diff --git "a/xlsum/bengali/xlsum_test.tsv" "b/xlsum/bengali/xlsum_test.tsv" new file mode 100644--- /dev/null +++ "b/xlsum/bengali/xlsum_test.tsv" @@ -0,0 +1,1000 @@ +text: ফেন্সিডিলের বোতল দিয়ে বাংলাদেশের মানচিত্র তৈরি করায় সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা হচ্ছে বিজিবি'র কুষ্টিয়ার মিরপুরে ৪ঠা ফেব্রুয়ারি বিজিবি একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করে, যেখানে গত কিছুদিনে বিজিবি'র জব্দকৃত মাদকদ্রব্য ধ্বংস করা হয়। ঐ অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রদর্শনীর উদ্দেশ্যে জব্দকৃত সব ধরণের মাদকদ্রব্য একসাথে সাজিয়ে রাখা হয়। সেখানে বাংলাদেশের ম্যাপের আদলে একটি প্রতিকৃতি তৈরি করা হয়, যেটি তৈরি করা হয় ফেন্সিডিলের বোতল দিয়ে। ফেন্সিডিলের বোতল দিয়ে তৈরি করা মানচিত্রের ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর সেটি নিয়ে তৈরি হয়েছে সমালোচনা। সমালোচনাকারীদের অনেকের মতে, ফেন্সিডিলের বোতল দিয়ে দেশের ম্যাপ তৈরি করায় বাংলাদেশের মানচিত্রকে অপমান করা হয়েছে । আবার কারো কারো মতে, মাদক ধ্বংস কার্যক্রমের মত একটি অনুষ্ঠানের গুরুত্বকে খর্ব করে বিষয়টিকে হাস্যরসের বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করেছে। সমালোচনাকারীদের অনেকের মতে, ফেন্সিডিলের বোতল দিয়ে বাংলাদেশের মানচিত্র তৈরি করায় অপমান করা হয়েছে বাংলাদেশের মানচিত্রকে তারা বলেন, এটা বিজিবি'র মত একটি সংস্থার কাছ থেকে কাম্য নয়। বিজিবি কী বলছে? বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের যেই বিভাগ অনুষ্ঠানটির আয়োজক ছিল, তারা অবশ্য বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে মানচিত্র তৈরির মত কাজ করেনি বলে জানিয়েছে। আয়োজকরা বলছেন, বাংলাদেশের সব অঞ্চলে মাদকের বিস্তারের বিষয়টি তুলে ধরতেই প্রতীকী এই মানচিত্র তৈরি করেছিলেন তারা। একই সাথে দেশের সব এলাকায় মাদক নির্মূলে বিজিবি'র ভূমিকা তুলে ধরাটাও এর একটি উদ্দেশ্য ছিল বলে বিবিসি বাংলাকে জানান আয়োজকরা। ফেন্সিডিল দিয়ে তৈরি মানচিত্রের মত জব্দ করা অন্যান্য মাদকদ্রব্যও প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে সাজিয়ে রাখা হয় অনুষ্ঠানের শুরুতে। পরে নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে গিয়ে সেগুলো ধ্বংস করা হয়। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: ফেন্সিডিলের বোতল দিয়ে ম্যাপ বানিয়ে বিপাকে বিজিবি 'বিদেশিরা পাচার করছে ২৬ হাজার কোটি টাকা' 'বিয়ের আগে সেক্স করো না' এ পরামর্শে কি কাজ হয়? বাংলাদেশের কুষ্টিয়ায় বর্ডার গার্ড জব্দ করা ফেন্সিডিল নামের মাদকের বোতল দিয়ে বাংলাদেশের মানচিত্র বানানোর এক ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক আর সমালোচনা। +text: স্ক��লে ভর্তি পরীক্ষার সময় অভিভাবকদের চরম অনিশ্চয়তায় ভুগতে হয়। স্কুলে ভর্তির মৌসুমে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকার নির্ধারিত ভর্তি ফি'র বাইরে 'গলাকাটা' অর্থ অভিভাবকদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে, এই অভিযোগের পটভূমিতে শিক্ষামন্ত্রী শুক্রবার এই মন্তব্য করেন। "সরকারের নিয়ন্ত্রণে যেটুকু থাকবে, তাতে নিয়ম মানা হবে। কিন্তু বেসরকারি হলেই সেটি একেবারেই লাগামছাড়া, সেটি একেবারেই হওয়া উচিত নয়," বিবিসি বাংলার সাথে এক সাক্ষাৎকারে দীপু মনি বলেন,"সে ক্ষেত্রেও একটা যুক্তিসঙ্গত সিলিং নিশ্চয়ই থাকা উচিত।" অভিভাবকদের উদ্ধৃত করে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম খবর দিচ্ছে, বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নের নামে করে ঢাকার নামীদামী স্কুলগুলোতে অভিভাবকদের কাছ থেকে গড়ে মাথাপিছু অতিরিক্ত ৫,০০০ থেকে ৩৫,০০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। কিন্তু এব্যাপারে স্কুলগুলোর বক্তব্য হচ্ছে, ব্যয় বেড়েছে। তাই বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত অর্থ নিতে হচ্ছে। স্কুল কমিটিগুলো এই বাড়তি অর্থ আদায় অনুমোদন করেছে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে। কিন্তু এ ধরনের অর্থ আদায়ের বিরুদ্ধে সতর্ক করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, "যদি কোন স্কুল এই অতিরিক্ত ফি নিয়ে থাকে তাহলে সাক্ষ্য-প্রমাণ সাপেক্ষে সেই স্কুলের বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।" ডা. দীপু মনি, শিক্ষামন্ত্রী। আরও পড়তে পারেন: নতুন মন্ত্রীদের অনভিজ্ঞতা কি সমস্যা হতে পারে? বাংলাদেশে সোশাল মিডিয়ায় নজরদারী যে কারণে বাড়ছে গণতান্ত্রিক দেশের তালিকায় নেই বাংলাদেশ: ইকোনমিস্ট "কোন স্কুলই এই ধরনের অনৈতিক এবং বেআইনি কাজ করবে না বলে আমি আশা করবো।" তিনি বলেন, "আমি অভিভাবকদের কাছে অনুরোধ করবো যদি কোন স্কুল এধরনের অতিরিক্ত ফি আদায় করবার চেষ্টা করে, তাহলে তারা যেন আমাদের কাছে সেই তথ্য-প্রমাণ দেন যেন আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি। আমরা নিজেরাও তথ্য সংগ্রহ করছি যে কোথাও এধরনের কিছু হচ্ছে কিনা। হলে অ।বশ্যই আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।" স্কুলগুলিতে ভর্তির ওপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় সর্বশেষ যে নীতিমালা তৈরি করেছে তাতে বলা হয়েছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় অবস্থিত এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে ৫,০০০ টাকার অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতে পারবে না। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার আংশিক এমপিওভুক���ত স্কুলগুলো উন্নয়ন এবং এমপিও বহির্ভূত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য শিক্ষার্থী ভর্তির সময় মাসিক বেতন, সেশন চার্জ ও উন্নয়ন ফি'সহ বাংলা মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৮,০০০ টাকা এবং ইংরেজি মাধ্যমে সর্বোচ্চ ১০,০০০ টাকা গ্রহণ করতে পারবে। উন্নয়ন খাতে কোন প্রতিষ্ঠান ৩,০০০ টাকার বেশি আদায় করতে পারবে না বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে নতুন সরকারের 'জিরো টলারেন্স' নীতির কথা উল্লেখ করে ডা. দীপ মনি বলেন, স্কুলগুলোর জন্য যে সিলিং নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অনেক বিচার-বিবেচনা করেই ঠিক করা হয়েছে। স্কুলগামী ক'টি শিশু। সেটি পুনর্বিবেচনা করার প্রয়োজন হলে তা নিয়ে নিশ্চয়ই আলোচনা করা যেতে পারে। কিন্তু তার আগে এখন পর্যন্ত যে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে, স্কুলগুলিতে তাই মেনে চলতে হবে বলে তিনি বলেন। বাংলাদেশে বেসরকারি স্কুলগুলিতে গত নভেম্বর মাস থেকে শুরু হয়েছে শিক্ষার্থী ভর্তির প্রক্রিয়া। অনেক স্কুলেই লটারি এবং ভর্তি পরীক্ষার পর্ব সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশের নবনিযুক্ত শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি মনে করছেন, সরকারি স্কুলের মতো বেসরকারি স্কুলেও সুনির্দিষ্টভাবে ভর্তি ফি বেঁধে দেয়া উচিত। +text: ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন টেলিভিশন নেটওয়ার্ক ফক্স অ্যাণ্ড ফ্রেন্ডসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মি ট্রাম্প বলেন, তাকে যদি ইমপিচ করা হয় তাহলে শেয়ার বাজারে বিপর্যয় নেমে আসবে এবং ''সবাই খুব গরীব হয়ে যাবে''। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার নিজের ইমপিচমেন্টের সম্ভাবনা নিয়ে মুখ খোলেননি বললেই চলে। তবে এই সাক্ষাৎকারেও তিনি দাবি করেছেন, তার ভাষায় যে ''দারুণ কাজ'' করছে তাকে তুমি কিছুতেই ইমপিচ করতে পারো না। মি: ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোয়েন নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করার অভিযোগে নিজের দোষ স্বীকার করার পর মি: ট্রাম্প এই মন্তব্য করেছেন। মি: কোয়েন বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশেই তিনি কাজ করেছিলেন। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ মেনে নিলেন ট্রাম্প সমর্থকদের আস্থা এখনো ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপরই সমর্থকদের আস্থা এখনো ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপরই মি: কোয়েন বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশেই তিনি কাজ করেছিলেন। তবে সংবাদদাতারা বলছেন নভেম্বরে মধ্য-মেয়াদের নির্বাচনের আগে মি: ট্রাম্পের প্রতিপক্ষরা তাকে ইমপিচ করার চেষ্ট�� করবেন বলে মনে হয় না। কেন ট্রাম্প বলছেন বাজারে ধস নামবে? ফক্স অ্যান্ড ফ্রেন্ডসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মি: ট্রাম্প বলেছেন, "যে দারুণ কাজ করছে তাকে কেন ইমপিচ করা হবে সেটা আমি বুঝতে পারছি না।'' "আমি বলে রাখছি আমাকে যদি কখনও ইমপিচ করা হয়, বাজারে ধস নামবে, সবাই দারুণ গরীব হয়ে যাবে।'' নিজের মাথার দিকে দেখিয়ে মি: ট্রাম্প বলেন, ''এর কারণ- এই যে মাথাটা- এই মাথাটা কাজ না করলে অর্থনীতিতে যেসব পরিসংখ্যান দেখবেন তা অবিশ্বাস্য হয়ে উঠবে।'' 'হাশ মানি' বা 'মুখ বন্ধ রাখার অর্থ' নিয়ে বিতর্ক কেন? মাইকেল কোয়েন বলেছেন ২০১৬র নির্বাচনী প্রচারণার সময় দুজন নারীর ''মুখ বন্ধ রাখার'' জন্য তিনি তাদের অর্থ দিয়েছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে এই দুই নারীর একজন পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলস্ এবং অন্যজন প্লেবয় মডেল ক্যারেন ম্যাকডুগাল। এই দুই নারীই দাবি করেছেন মি: ট্রাম্পের সঙ্গে তাদের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আদালতে শপথ নিয়ে মি: কোয়েন বলেছেন তিনি তাদের মুখ বন্ধ রাখতে অর্থ দিয়েছিলেন মি: ট্রাম্পের ''নির্দেশে'' এবং 'এর মূল উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচনকে প্রভাবিত করা''। তবে মি: ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেছেন ওই দুই নারীকে অর্থ দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা বিধি লংঘন করা হয় নি। তিনি বলেছেন ওই অর্থ তিনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে দিয়েছিলেন, প্রচারণার জন্র বরাদ্দ অর্থ থেকে নয়। তবে এ বিষয়ে তিনি বলেন তিনি জেনেছেন ''অনেক পরে''। পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মি: ট্রাম্প জুলাই মাসে মি: কোয়েন একটি অডিও টেপ প্রকাশ করেন যেখানে নির্বাচনের আগে তিনি এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প এর মধ্যে একটি পেমেন্ট নিয়ে আলোচনা করছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মি: কোয়েনের বিরুদ্ধে বানিয়ে বানিয়ে কাহিনি তৈরি করার অভিযোগ এনেছেন এবং বলেছেন তিনি তার সাজা হালকা হতে পারে এই আশা থেকে এসব কথা সাজিয়েছেন। দুই নারীকে অর্থ দেওয়া কি নির্বাচনী আইনের লংঘন? মুখ বন্ধ রাখার জন্য দেওয়া অর্থ ''হাশ মানি''র কথা নির্বাচনী প্রচারণার সময় কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়নি। প্রশ্ন হচ্ছে ওই অর্থ মি: ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সম্মানহানি ঠেকানোর জন্য দেয়া হয়েছিল নাকি প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসাবে তার ভাবমূর্তি যাতে ক্ষুণ্ণ না হয় তার জন্য দেয়া হয়েছিল? আমেরিকান নির্বাচনী আইন অনুযায়ী নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে এমন যে কোন আর্থিক লেনদেনের বিষয় নির্বাচন কমিশনকে জানানোর নিয়ম। এই অর্থ নিয়ে মি: ট্রাম্পকে যদি বিচারের মুখোমুখি করতে হয়, তাহলে সেটা সাধারণ আদালতে করা যাবে না, কারণ তিনি ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু অভিশংসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কংগ্রেস তাকে বিচারের কাঠগড়ায় তুলতে পারে। সেক্ষেত্রে তদন্তকারীদের প্রমাণ করতে হবে যে নির্বাচনের কারণে তিনি মি: কোয়েনকে ওই অর্থ দিয়েছিলেন। আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে তাকে ইমপিচ বা অভিশংসন করার যে কোনও প্রচেষ্টা হলে মার্কিন অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে। +text: বাংলাদেশে নতুন আইনটি কার্যকর হলে কুকুরকে একটানা আটকে রাখলে শাস্তি হবে জেল জরিমানা। এই আইনে বলা হয়েছে কুকুরকে চলাফেরার সুযোগ না দিয়ে একটানা ২৪ ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় বেঁধে রাখলে জেল জরিমানা ভোগ করতে হবে। এই অপরাধের জন্য ছয় মাসের জেল হতে পারে। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানিয়েছেন যে, ১৯২০ সালের পশুর প্রতি নিষ্ঠুরতা নিরোধ আইনের ভিত্তিতেই এই আইনটি করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রত্যেক প্রাণীর মালিক বা তত্ত্বাবধানকারীর দায়িত্ব হবে যৌক্তিক কারণ ছাড়া প্রাণীর প্রতি মানবিক আচরণ করা। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে প্রাণীদের অধিকার নিয়ে কাজ করছে পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাকিবুল হক। তিনি বলেন, "এই আইনের মাধ্যমে বন্যপ্রাণী ছাড়াও পোষা প্রাণী থেকে শুরু করে অন্য যে প্রাণী আছে সবাই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের একটি আইনি অধিকারের মধ্যে চলে এলো"। এর আগে ১৯২০ সালের আইনটি থাকলেও তার কোনো প্রয়োগ ছিলোনা বলে মন্তব্য করেন তিনি। মিস্টার হক বলেন, বাংলাদেশে ব্যক্তি বিশেষের ইচ্ছের ওপর নির্ভর করে প্রাণী বাসায় বা ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে কেমন থাকবে। তিনি যদি মানবিক হন, সহমর্মী হন তাহলে হয়তো ভালো থাকে। আরো পড়তে পারেন: বিড়াল ততটাই বুদ্ধিমান, যতটা কুকুর মাটিতে পুঁতে ১৬টি কুকুর হত্যার দায়ে একজনের জেল রাস্তার যে কুকুর মানুষের আগেই মহাশূন্যে গিয়েছিল মৃত মনিবের জন্য ৮০ দিন ধরে রাস্তায় যে কুকুর আহত কুকুর বিড়ালের পাশে রবিনহুড "অনেক প্রাণ বিশেষ কুকুর বিড়াল অনেকে শখ করে কিনে থাকেন। পরে দেখা যায় কিছু ��িন পর তাকে বাউন্ডারি ওয়ালের সাথে আটকে রাখে।" "ধুকে ধুকে সেখানে মারা যায়। চিকিৎসা দেয়না। ভ্যাকসিন দেয়না। আবার পথে যেসব প্রাণী পথে থাকে তাদের ঘৃণার চোখে দেখা যায়," তিনি বলেন। মিস্টার হক বলেন, "অনেক সময় একটি গরুর সামনে আরেকটি গরুকে জবাই করা হয়। তার মানে হলো জবাইর আগেই একটি গরুকে মানসিকভাবে হত্যা করা হয়।" "ঘোড়ার গাড়ি ব্রিটিশ আমল থেকে চলছে। সেটি চলছে ইচ্ছামতো। অনেক ঘোড়া নাজুক অবস্থায় আছে সক্ষমতার বাইরে বোঝা বহনের কারণে। হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি নতুন বিষয়। মুরগি ঝুলিয়ে নিয়ে যাওয়া। গরু ছাগল যেভাবে নেয়া হয়"। পোষা কুকুর, বিড়ালকে একটানা আটকে রাখলে শাস্তি হবে জেল জরিমানা। তিনি বলেন, এসব বিষয়ই নতুন আইনের আওতায় আনা সম্ভব যদি এটি সততার সাথে প্রয়োগ করা হয়। এখন নতুন আইনটি কার্যকর হলে কোন ব্যক্তি বা সংগঠনকে এগিয়ে আসতে হবে এসব প্রাণীর আইনি অধিকার পাওয়ার ক্ষেত্রে। সেজন্য আইনটি কার্যকরের জন্য সচেতনতা তৈরিও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি। বাংলাদেশের মন্ত্রিসভা নতুন একটি আইনের খসড়া অনুমোদন করেছে যেটি চূড়ান্তভাবে কার্যকর হলে কুকুরকে চলাফেরার সুযোগ দিতে হবে, একটানা আটকে রাখা যাবেনা। +text: ফাইল ফটো পুরানো ঢাকার চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের এক সপ্তাহ না পেরোতেই, রাত দেড়টার পর ভাষানটেক বস্তিতে লাগে। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ডিউটি অফিসার ইন্সপেক্টর আতোয়ার রহমান জানিয়েছেন, দমকল বাহিনীর নয়টি স্টেশনের ২১টি ইউনিট আড়াই ঘন্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে সমর্থ হয়েছে। কিন্তু আগুনের সূত্রপাত কিভাবে হলো তা নিশ্চিতভাবে জানাতে পারেননি তিনি। ইতোমধ্যেই সেখানকার শতাধিক বাড়িঘর পুড়ে গেছে বলে জানা গেছে। মিঃ রহমান জানিয়েছেন, আগুন লাগার পর প্রথমে আটটি ইউনিট কাজ শুরু করে। পরে আগুন বাড়তে থাকলে দমকল বাহিনীর আরো দশটি ইউনিট যুক্ত হয়। আরো পড়তে পারেন: ভয়াবহ আগুনে নিহত ৭৮, স্বজনরা লাশ পাবেন কিভাবে? ছবিতে পুরনো ঢাকার চকবাজারের আগুন আগুন নেভাতে দমকলকর্মীদের জন্য উন্নত সব কৌশল বস্তির বেশিরভাগ বাড়িঘর কাঁচা, অর্থাৎ ঢেউটিন, বাঁশ ও কাঠের উপকরণ দিয়ে তৈরি হবার ফলে, আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু আগুন লাগার অল্প সময়ের মধ্যেই ফায়ার সার্ভিস কাজ শুরু করে। এরপর স্থানীয় মানুষেরাও আগুন নেভাতে এগিয়ে এসেছেন বলে জানা যায়। রাত চারটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সমর্থ হয় ফায়ার সার্ভিস। তবে এখনো বিভিন্ন জায়গায় ধোয়া বের হতে দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এদিকে ভাষানটেক থানার ডিউটি অফিসার জানিয়েছেন, এখনো কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এছাড়া আগুনে কী পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে তা নিরূপণ হবে। মিরপুর ১৪ নম্বরের ভাষানটেক জাহাঙ্গীর বস্তি সিআরপি হাসপাতালের পাশে অবস্থিত। পুলিশ বলছে, ঐ বস্তিতে প্রায় এক হাজার ঘর আছে, যেখানে বহু নিম্ন আয়ের মানুষ বাস করেন। এক বছর আগেও ঐ বস্তিতে আগুনে শতাধিক ঘর পুড়ে গিয়েছিল। ঢাকার বস্তিতে 'লুমকানি' ডিভাইস, ঠেকাতে পারবে আগুন? আড়াই ঘন্টার চেষ্টার পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে মিরপুরের ভাষানটেকে জাহাঙ্গীর বস্তিতে লাগা আগুন। এখনো কারো নিহত হবার খবর জানা যায়নি। +text: কোয়াই নদীর ওপর রেলওয়ে সেতু। এই রেলওয়ের নাম দেয়া হয়েছিল 'ডেথ রেলওয়ে' অর্থাৎ মরণ রেলওয়ে, কারণ এটি তৈরি করতে গিয়ে অনাহার, রোগ-বালাই, বৈরি আবহাওয়া আর জাপানী সৈন্যদের নৃশংস আচরণে বহু যুদ্ধবন্দী প্রাণ হারায়। এমনি একজন ব্রিটিশ যুদ্ধবন্দী ছিলেন সিরিল ডয়। বিবিসির ক্লেয়ার বোওজকে তিনি বলছিলেন যুদ্ধবন্দী হিসেবে তার অভিজ্ঞতার কথা। "সেটা ছিল এক আদিম জীবন," বলছেন তিনি, "আমরা সভ্যতা থেকে বহু দূরে চলে গিয়েছিলাম। ঢুকে পড়েছিলাম সম্পূর্ণ ভিন্ন এক জগতে।" জাপানীরা যখন সিরিল ডয়কে আটক করে তখন তার বয়স মাত্র ২১ বছর। বন্দী অবস্থায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয় গভীর জঙ্গলে। সেখানে তার পরনের সামরিক পোশাক খুলে ফেলা হয়। তার ব্যবহৃত জিনিসপত্র সব জব্দ করা হয়। পরনের জন্য তাকে দেয়া হয় শুধুমাত্র একটি লেংটি। আরো পড়ুন: যে পাঁচ যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরেও বহুকাল চলেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের 'যৌনদাসী' বিতর্ক কেন আবার সামনে বিশ্বযুদ্ধের গোপন খবর বয়ে বেড়াচ্ছেন যে নারী গুপ্তচর জাপানী শিবিরে মিত্রবাহিনীর যুদ্ধবন্ধী। বন্দী জীবনের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলছিলেন, "আজকাল আমরা যাকে খুব সাধারণ ব্যবহার্য জিনিসপত্র বলে মনে করি, যেমন খাবার প্লেট, টুথব্রাশ, তোয়ালে কিংবা গরম পানি - এসব কিছুই আমাদের ছিল না। আমাদের কাছে যা ছিল তাও সরিয়ে নেয়া হয়েছিল।" দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় ১৯৪২ সালের শুরুর দিকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ব্রিটিশদের শক্ত ঘাঁটি সি���্গাপুরের পতন ঘটে। সেই যুদ্ধে জাপান ছিল হিটলারের মিত্র-দেশ। সে সময় যে ৬০,০০০ ব্রিটিশ সৈন্য যুদ্ধবন্দী হিসেবে আটক হয় সিরিল ডয় ছিলেন তাদের মধ্যে একজন। জনবসতি থেকে বহু দূরে থাইল্যান্ডের গভীর জঙ্গলে তাকে শ্রম-দাস হিসেবে আটক রাখা হয়। তিনি বলছেন, "প্রতিটি ক্যাম্পে ছিল একজন করে কমান্ডেন্ট। ক্যাম্পগুলোকে পাহারা দিত কোরিয়ান সৈন্যরা। ক্যাম্পের চারিদিক ঘিরে ছিল না কোন কাঁটাতারের বেড়া।~ "কিন্তু তারপরও আপনি সেখান থেকে পালাতে পারবেন না। কারণ সেখানে আশে পাশে কোন কিছু ছিল না। আমি যে ক্যাম্পে ছিলাম সেখানে তিন জন বন্দী পালানোর চেষ্টা করেছিল।" "কিন্তু তিনজনই পরে ধরা পড়ে যায়। তাদের হত্যা করার আগে তাদের দিয়েই কবর খোঁড়ানো হয়। ঐ ধরনের মানুষই ছিল ক্যাম্পগুলোর দায়িত্বে।" জাপানী বন্দী শিবিরে মিত্রবাহিনীর সৈন্যরা। থাইল্যান্ড থেকে বার্মা পর্যন্ত একটি রেল লাইন তৈরির কাজে জাপানীরা এই যুদ্ধবন্দীদের ব্যবহার করেছিল। এই রেলপথ দিয়ে তারা সৈন্য, খাবার, গোলাবারুদ এবং অন্যান্য রসদ-পত্র আনা নেয়া করতো। এটা ছিল বিশাল এক কর্মযজ্ঞ। পাহাড়-পর্বত কেটে, পাথর ভেঙে, জঙ্গল পরিষ্কার করে এই রেললাইন বসানো হয়েছিল। "জাপানীরা কোনভাবে ইংরেজি শব্দ 'স্পিড' (গতি) ব্যবহার করতে শিখেছিল। তাই তারা সব সময় 'স্পিডো, স্পিডো' বলে আমাদের ধমকা-ধমকি করতো।" "তাই আমাদের সব সময় কাজ করে যেতে হতো। সরাতে হতো টনকে টন মাটি আর পাথর। বর্ষাকালে কাজ করতো হতো কাদা আর পানির মধ্য দিয়ে।" সিরিল ডয়-এর দায়িত্ব ছিল কোয়াই নামের এক নদীর আশেপাশে গাছ কেটে জঙ্গল পরিষ্কার করা। এখানে একটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছিল। পরে এই সেতুটিকে নিয়ে হলিউডে একটি ছায়াছবি তৈরি করা হয়। যার নাম ছিল: ব্রিজ অন দ্যা রিভার কোয়াই। ছবিটি জনপ্রিয় হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহতদের স্মরণে তৈরি সৌধ। "আমাদের কাজ ছিল জঙ্গল পরিষ্কারের সাথে সাথে নদীর খাড়া পারের মাটি কেটে নিচে নামিয়ে দেয়া। একাজ করতে গিয়ে আমরা নিয়মিতভাবে সাপের খপ্পরে পড়তাম। ওপর থেকে নেমে আসা সাপ সরিয়ে আমাদের কাজ করতে হতো।" কাজটা ছিল খুবই কঠিন এবং ছিল না কোন অবসর। দিনের কাজ শেষ হলে যুদ্ধবন্দীতে বোঝাই ক্যাম্পগুলোতে অবসন্ন শ্রম-দাসরা বেঘোরে ঘুমাতো। তাদের বিছানা ছিল বাঁশের তৈরি। ব্যক্তিগত গোপনীয়তার কোন স্থান ছিল না ক্যাম্পে। "টয়লেট বলতো বোঝাতো খোলা পায়খানা। সেগুলো ছিল মূলত মাটিতে একটা গর্ত। তার পর কাঠের পাটাতন। তার ওপর বসে কাজটা সারতে হতো।" "সেগুলো ছিল কিলবিলে পোকায় ভর্তি। ছিল না কোন টয়লেট পেপার। জঙ্গল থেকে আনা গাছের পাতা দিয়ে পরিষ্কার করতে হতো। ক্যাম্পে যা কিছু ঘটতো তার সাথে মানিয়ে চলার জন্য মনকে যতটা সম্ভব শক্ত রাখতে হতো।" কিন্তু কোনভাবে মনকে সবল রাখা সম্ভব হলেও দেহকে রোগমুক্ত রাখার কাজটা ছিল খুবই কঠিন। সারা দিনে খাবার দেয়া হতো মাত্র আধা-কাপ ভাত। থাই-বার্মা রেললাইনটি দেখতে বহু পর্যটক আসেন। ফলে পুষ্টির অভাবে বন্দীদের স্বাস্থ্য ভেঙে পড়েছিল। "ক্যাম্পে যে অসুখটা সবচেয়ে বেশি ছিল তা হলো বেরিবেরি। এই রোগে মানুষের পায়ে পানি জমে। এবং সেগুলো হাতির পায়ের মতো ফুলে যায়। কারণ হচ্ছে ভিটামিনের অভাব। আরও ছিল কার্ডিয়াক বেরিবেরি, হার্টের সমস্যা। আমারও এই রোগ হয়েছিল।" জাপানীরা যুদ্ধবন্দীদের কোন ধরনের মেডিকেল সেবা দিত না। ফলে রোগ হলে চিকিৎসার ভার নিতে হতো যুদ্ধবন্দী ডাক্তারদের নিজেদের। সিরিল ডয়-এর পায়ে একবার একটি ক্ষত থেকে ইনফেকশন তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এজন্য তাকে ভরসা করতে হয়েছিল একজন যুদ্ধবন্দী অস্ট্রেলীয় ডাক্তারের ওপর। তার জীবন রক্ষার জন্য যে পদ্ধতিতে তার পায়ে অপারেশন করতে হয়েছিল, সে সম্পর্কে বলছিলেন তিনি। "আমার পায়ে পুঁজ জমেছিল। ফোঁড়ার মুখ দেখা দিয়েছিল। আমি টিপে টিপে সেই পুঁজ বের করে দিতাম। অস্ট্রেলিয়ার মেডিকেল কোরের ডাক্তার মেজর আর্থার মুন আমাকে দেখে বললেন, 'দেখে তো মনে হচ্ছে তোমার ব্যাপারে একটা ব্যবস্থা নিতে হবে।" কোয়াই নদীর ওপর সেতুটি এখন বড় এক পর্যটক আকর্ষক। "তারা আমাকে নিয়ে গেল একটি কুঁড়ে ঘরে। সেখানে একটি বাঁশের মাচার ওপর আমাকে শোয়ানো হলো। তারপর কোন ধরনের অ্যানেসথেশিয়া ছাড়াই তারা আমার পায়ের মাংস কেটে ভেতর থেকে পেশির একটি টুকরা টেনে বের করলো।" "সেই অপারেশনটাই আমার জীবন রক্ষা করেছিল। এই ছিল ক্যাম্পের হাল।" "আমার পাশে যে শুয়ে ছিল তার সারা গা ভরা ছিল ফোঁড়ায়। সেগুলোতে পোকা দেখা দিয়েছিল। বড় বড় মাছি ঢুকে যেত ফোঁড়ার মধ্যে।" "প্রচণ্ড সে জ্বরে প্রলাপ বকতো। আমার পাশের বিছানাতেই সে মারা যায়।" থাই-বার্মা রেললাইনটি তৈরি করতে সময় লেগেছিল মোট ১৪ মাস। এই রেল লাইনটি তৈরি করতে গিয়ে এক লক্ষেরও বেশি এশীয় শ্রম-দাস প্রাণ হারায়�� তাদের পাশাপাশি ১৬,০০০ ব্রিটিশ, আমেরিকান, অস্ট্রেলিয়ান এবং ডাচ যুদ্ধবন্দী মারা যায়। এই রেল রাইনের প্রতি চারটি স্লিপারের মধ্যে একটি একজন করে মানুষের মৃত্যুর প্রতীকী বহন করছে। "সে সময়টাতে যারা আমদের প্রতি এধরনের আচরণ করেছিল তাদের প্রতি আমার ছিল প্রচণ্ড ঘৃণা।" দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত বোমা। "সত্যি বলতে কি আমাদের ক্যাম্পের যে কারও হাতে তখন যদি বন্দুক থাকতো তাহলে তাদের ওপর গুলি চালাতে একটুও দ্বিধা করতাম না। জাপানী আর তাদের কোরিয়ান গার্ডগুলোকে ঘৃণা করেই আমাদের বেঁচে থাকতে হয়েছিল।" যুদ্ধবন্দী হিসেবে সিরিল ডয় আটক ছিলেন প্রায় চার বছর। হিরোশিমা এবং নাগাসাকির ওপর আণবিক বোমা নিক্ষেপের পর জাপানীরা আত্মসমর্পণের রাজি হয়। আর তার মধ্য দিয়ে পরিসমাপ্তি ঘটে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের। সিরিল ডয় বলছেন, "মানুষের বেঁচে থাকার তাগিদ এমনই যে কোনভাবেই আপনি আপনার বিশ্বাস হারাতে চাইবেন না। সবসময় আপনার মাথায় ঘুরতে থাকবে কোন না কোন একদিন আপনি নিশ্চয়ই মুক্ত হবেন।" সিরিল ডয় এখন থাকেন পূর্ব ইংল্যান্ডে। স্ত্রী, দুই সন্তান, চার নাতি-নাতনী এবং নয় জন পৌত্র-পুত্রী নিয়ে তার সংসার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্র বাহিনীর হাজার হাজার সৈন্য জাপানীদের হাতে বন্দী হয়েছিল এবং থাইল্যান্ড থেকে বার্মা পর্যন্ত এক রেল লাইন নির্মাণে শ্রম দিতে তাদের বাধ্য করা হয়েছিল। +text: সেপ্টেম্বরের শেষদিকে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে কয়েক হাজার মানুষ মারা গেছে ঐ অঞ্চলে একটি মেসেজিং অ্যাপে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যায় যে সেনাবাহিনীর পোশাক পরা দুই আর্মেনিয়ান আজারবাইজানের সেনাবাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন। আরেকটি ভিডিওতে ঐ দুই আর্মেনিয়ান নাগরিককে হাত বাঁধা অবস্থায় গুলি করতে দেখা যায় আজারবাইজানের সেনাবাহিনীকে। নিহত হওয়া দুই ব্যক্তিকে শনাক্ত করার পাশাপাশি তাদের পরিচয়ও প্রকাশ করেছে আর্মেনিয়ার কর্তৃপক্ষ। ইউরোপের মানবাধিকার পরিস্থিতি নজরদারির কাজে নিয়োজিত শীর্ষ সংস্থা কাউন্সিল অব ইউরোপ নিশ্চিত করেছে যে তারা ভিডিওটি হাতে পেয়েছে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত করবে। ককেশাস পর্বতমালার অঞ্চলটিতে ২৭শে সেপ্টেম্বর দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। তারপর থেকে দুই পক্ষের যুদ্ধে বেসামরিক নাগরিক সহ কয়েক হাজার মানুষ মারা গেছে। ঐ অঞ্চলটি আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের অংশ হিসেবে স্বীকৃত হলেও এলাকাটির নিয়ন্ত্রণ করে জাতিগত আর্মেনিয়ানরা। ১০ই অক্টোবর প্রথম দফায় এবং ১৮ই অক্টোবর দ্বিতীয় দফায় দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতির সমঝোতা হলেও সংঘাত অব্যাহত থাকে। এরই মধ্যে ঐ অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষকে ঘরছাড়া হতে হয়েছে। আরো পড়তে পারেন: আজারবাইজান-আর্মেনিয়ার সংঘাত কি বৃহত্তর যুদ্ধে রূপ নিতে পারে? সিরিয়ানদের যুদ্ধ করতে আজারবাইজানে পাঠানো হচ্ছে নাগোর্নো-কারাবাখ: যেখানে যুদ্ধের কৌশল বদলে দিয়েছে তুর্কী ড্রোন আজেরীদের জাতীয় সত্ত্বা ঘিরে আছে স্বদেশ হারানোর যে ক্ষত আজারবাইজান-আর্মেনিয়া যুদ্ধ: নাগোর্নো-কারাবাখে গিয়ে যা দেখেছে বিবিসি আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের মধ্যে আবার লড়াই শুরু হাদরুতে দুইজন আর্মেনিয়ান আটকের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে ভুয়া ভিডিও দুই পক্ষের সেনাবাহিনীই যুদ্ধবন্দী এবং প্রতিপক্ষের সৈন্যদের মরদেহের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেছে বলে দেখা গেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় যুদ্ধবন্দীদের আঘাত করার বা হত্যা করার যেই ভিডিওগুলো প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলো থেকে মাত্র দুটি ভিডিওর সত্যতা যাচাই করতে পেরেছে বিবিসি। টেলেগ্রাম চ্যানেলগুলোতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে আজারবাইজানের একজন যুদ্ধবন্দীকে এক আর্মেনিয়ান সেনার দ্বারা গুলিবিদ্ধ হতে দেখা যায়। কিন্তু ঐ ভিডিওটি আসলে রাশিয়ার একটি ভিডিও, যেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ২০১৩ সালে প্রথমবার শেয়ার করা হয়েছিল। বিবিসি যে ভিডিও দু'টো যাচাই করতে পেরেছে, সেগুলো টেলিগ্রামে আজারবাইজানের সমর্থক একটি নামহীন রুশ চ্যানেলে গত সপ্তাহে প্রকাশ করা হয়েছিল। কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার দ্বন্দ্ব ভিডিওতে কী রয়েছে? প্রথম ভিডিওতে দুইজন আর্মেনিয়ান নাগরিককে বন্দী করার চিত্র দেখা যায়। ঐ ভিডিওতে আজারবাইজানের বাচনভঙ্গিতে রুশ ভাষায় আদেশ দিতে শোনা যায় এক ব্যক্তিকে। তিনি বন্দীদের অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিচ্ছিলেন। প্রথম ভিডিওর পরপরই দ্বিতীয় ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়, যেখানে ঐ দুই বন্দীকে হত্যার দৃশ্য দেখা যায়। দুইজন বন্দীর হাত পিছমোড়া করে বাঁধা ছিল এবং তাদের শরীর আর্মেনিয়া ও অস্বীকৃত অঞ্চল নাগোর্নো-কারাবাখের পতাকায় আবৃত ���িল। তারা ছোট একটি দেয়ালের ওপর বসে ছিল। ঐ পর্যায়ে আজারবাইজানি ভাষায় কেউ একজন নির্দেশ দেয়: "তাদের মাথায় তাক করো।" এরপর একাধিক গুলির শব্দ শোনা যায় এবং দুই বন্দীকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখা যায়। যুদ্ধের কারণে বহু মানুষ শরণার্থী হয়ে পড়েছেন। ভিডিওকে 'ভুয়া' দাবি আজারবাইজানের বিবিসি নিশ্চিত করেছে যে দুই ভিডিওতেই নির্দেশ প্রদানকারী ব্যক্তি আঞ্চলিক বাচনভঙ্গিতে কথা বলা আজারবাইজানি নাগরিক। আর প্রথম ভিডিওতে দেখতে পাওয়া বন্দীদেরই দ্বিতীয় ভিডিওতে হত্যা করা হয়। আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ভিডিওগুলোকে ভুয়া হিসেবে দাবি করেছে এবং এই ধরনের ভিডিও প্রকাশ করে উস্কানি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে। ভিডিও ক্লিপগুলো অবশ্য প্রকাশিত হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই সরিয়ে নেয়া হয়। তর পরদিনই আজারবাইজানের প্রসিকিউটর জেনারেল ঘোষণা দেন যে ঐ ভিডিওগুলো যে ভুয়া, তা তদন্তের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছেন তারা। এই সড়কটি আর্মেনিয়া থেকে গেছে নাগোর্নো-কারাবাখে। ভিডিওগুলো কী আসলেই ভুয়া? প্রকাশিত হওয়া দু'টি ভিডিও যাচাই করে বিবিসি নিশ্চিত হতে পেরেছে যে সেগুলো হাদরুত অঞ্চলে নেয়া হয়েছে, দক্ষিণ নাগোর্নো-কারাবাখের ফুজুলি অঞ্চলের কাছের যেই শহরে তুমুল যুদ্ধ হয়েছে। ৯ থেকে ১৫ই অক্টোবরের মধ্যে কোনো সময় ভিডিওগুলো রেকর্ড করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আজারবাইজান ৯ই অক্টোবর হাদরুত শহরের দখল নেয়ার দাবি করলেও তার তিনদিন পরও শহরটির দখলকে কেন্দ্র করে তীব্র যুদ্ধ হয়েছে দুই পক্ষের মধ্যে। বেলিংকাট ওপেন সোর্স তদন্তকারীরা প্রথমবার ঐ ভিডিওগুলোর সত্যতা নিয়ে বিশ্লেষণ প্রকাশ করে। তাদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী: "ভিডিওতে আটক হওয়া দুই ব্যক্তি আর্মেনিয়ান যোদ্ধা যারা ৯ থেকে ১৫ই অক্টোবরের মধ্যে আজারবাইজানের সেনাদের, সম্ভবত স্পেশাল ফোর্স, হাতে আটক হওয়ার অল্প সময় পর মারা গেছে।" আজারবাইজানের অনলাইন কমেন্টেটররা ঐ ভিডিও ক্লিপের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন করলেও বিবিসি যেসব সেনা বিশেষজ্ঞদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তারা মনে করেন যে ভিডিওটি আসল। সাবেক ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা বিবিসিকে নিশ্চিত করেন যে: "এগুলো আসল বুলেট এবং এটি আসল হত্যাকাণ্ড। এটিকে সাজানো মনে করার কোনো কারণ আমি দেখি না।" তিনি বলেন যে একটি গুলির ক্ষত থেকে মাথার মগজ সদৃশ বস্তু বে��� হয়ে আসতেও দেখা গেছে। চার দশক ধরে দুই দেশের মধ্যে চলছে এই দ্বন্দ্ব। আর্মেনিয়ার বক্তব্য কী? আর্মেনিয়ার মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা আরমান তাতোইয়ান আনুষ্ঠানিকভাবে বন্দীদের হত্যা করার ঘটনাকে 'অনস্বীকার্য যুদ্ধাপরাধ' হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, "এই ভিডিওগুলিতে দেখা যায় যে আজারবাইজানের সেনাবাহিনীর সদস্যরা বন্দীদের অপমান করে এবং চূড়ান্ত অপমানের মধ্য দিয়ে তাদের হত্যা করে।" তিনি জানান ইউরোপিয়ান আদালতে আর্মেনিয়ার প্রতিনিধি এরই মধ্যে ঐ ভিডিওগুলোর কপি চেয়েছেন। মি. তাতোইয়ান জানিয়েছেন যে তিনি ঐ ভিডিওগুলোর কপি জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার, ইউরোপিয়ান কাউন্সিলসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পক্ষকে পাঠাবেন। হাদরুত অঞ্চলের ঐ ভিডিওটি প্রকাশিত হওয়ার পর যুদ্ধরত দুই পক্ষই বিবৃতি দিয়ে অনেক যুদ্ধবন্দীর নাম প্রকাশ করেছে। আজারবাইজান দুইজন বন্দীর চিকিৎসা সেবা পাওয়ার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে আর্মেনিয়ানরা কারাবাখের একটি হাসপাতালে এক আজারবাইজানি বন্দীর চিকিৎসা পাওয়ার ছবি প্রকাশ করেছে। যুদ্ধাপরাধ কী? বিতর্কিত নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চলে আজারবাইজানের সেনাবাহিনী ও জাতিগত আর্মেনিয়ানদের মধ্যে চলতে থাকা যুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ সংঘটন হওয়ার কিছু ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে সম্প্রতি। +text: গালওয়ান ভ্যালি এই সিদ্ধান্তের কারণ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্য দেয়া হয়নি। তবে চীনা সীমান্ত রক্ষীদের সাথে সংঘর্ষের পর অন্তত ২০ জন ভারতীয় সৈন্য নিহত হওয়ার পরপর তাদের এই সিদ্ধান্ত এলো। দুই দেশের মধ্যে ১৯৯৬ সালের সমঝোতা অনুসারে, ওই এলাকায় কোন পক্ষই আগ্নেয়াস্ত্র বা বিস্ফোরক বহন করে না। ভারত যদিও জানিয়েছে, ২০ জন সৈন্য নিহত হওয়ার পাশাপাশি তাদের ৭৬ জন আহত হয়েছে, তবে চীন তাদের সৈন্য হতাহতের ব্যাপারে কোন তথ্য জানায় নি। হংকংয়ের গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষক পাঠানোর এই খবরটি চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোয় গত ২০শে জুন প্রকাশিত হয়েছে। আরো পড়ুন: বিতর্কিত সীমান্তের কাছে 'চীনের নতুন স্থাপনা' নির্মাণ? গালওয়ান উপত্যকার পর্বতচূড়ায় ঠান্ডা ও বৈরি এক যুদ্ধক্ষেত্র চীন-ভারত সীমান্ত বিরোধের পেছনে যেসব কারণ চীন-ভারত সংঘাত: কার শক্তি কতটা, কোন্‌ দেশ কার পক্ষ নেবে রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যম সিসিটিভি জানিয়েছে, ২০ জন মার্শাল আর্ট যোদ্ধা তিব্বতের রাজধানী লাসায় অবস্থান করবে। তবে চীনের গণমাধ্যমগুলো এটা নিশ্চিত করেনি যে, তারা ভারত সীমান্তে দায়িত্বরত চীনা সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দেবে কিনা। লাদাখে গত ১৫ই জুন গালওয়ান রিভার ভ্যালির ওই সংঘর্ষের ঘটনায় একে অপরকে দায়ী করেছে দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশ - চীন ও ভারত। চরম জলবায়ু ও অতি উঁচু ওই অঞ্চলটি আকসাই চীনের কাছাকাছি- চীন নিয়ন্ত্রিত যে এলাকার মালিকানা দাবি করে ভারতও। প্রায় অর্ধশতকের মধ্যে দুই দেশের মধ্যে এই প্রথমবার সংঘর্ষে এতো হতাহতের ঘটনা ঘটলো। তবে ওই ঘটনার পর থেকে পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে থাকা প্রায় অচিহ্নিত লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) নিয়ে দীর্ঘ দিনের উত্তেজনা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: দিল্লির আকাশ ছেয়ে গেল ঝাঁক ঝাঁক পঙ্গপালে বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ শয্যা সত্যিই খালি আছে? ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল বিড়ম্বনা, সমাধানে কী ভাবছে সরকার করোনাভাইরাস: বিশ্বের কোন্ দেশে মহামারির অবস্থা বেশি খারাপ তিব্বত মালভূমিতে অবস্থানরত চীনা সৈন্যদের মার্শাল আর্ট শেখানোর জন্য ২০জন প্রশিক্ষক পাঠাচ্ছে চীন। +text: জাকারিয়া, জার্মানি ছেড়ে যিনি দেশে ফিরে যাচ্ছেন তারা বলছে, জার্মানিতে অনেক দিন থাকলেও সেখানকার সমাজের সাথে তারা মিশতে পারছে না। তাই একাধিক দেশের ভেতর দিয়ে শত শত মাইল পাড়ি দিয়ে যে পথে তারা ইউরোপে এসেছিল - ঠিক সেইসব বিপজ্জনক এবং অবৈধ চোরাই পথগুলো দিয়েই তারা আবার তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় ফিরে যাচ্ছে। এদেরই একজনের নাম জাকারিয়া। তিনি এবং তার দলের কয়েকজনকে অনুসরণ করে বিবিসির সংবাদদাতারা দেখেছেন কিভাবে তারা গ্রিস সীমান্ত দিয়ে তুরস্কে ঢুকছেন। গ্রিসের পুলিশ অনেক সময়ই অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দেবার চেষ্টাকারীদের আটক করে। গ্রিস-তুরস্ক সীমান্তে এরকম ১০-১২ জন সিরিয়ান নাগরিকের সাথে ধস্তাধস্তি এবং গ্রেফতারের দৃশ্যও দেখেছেন তারা। আরো পড়ুন: হাসপাতাল থেকে পলাতক 'বৃক্ষ-মানব' আবুল বাজানদার সিরিয়া নিয়ে কি পরাশক্তিগুলোর মধ্যে যুদ্ধ বাধবে? গ্রিস তুরস্ক সীমান্তে পুলিশ আটক করছে সিরিয়ানদের এই দৃশ্য দেখলে অনেকে বিস্মিত হবেন। কারণ তারা গ্রিসে ঢোকার চেষ্টা করছে না, যেমনটা দু বছর আগে হাজার হাজার লোক করেছিলো। বরং ��ল্টোটা হচ্ছে এখানে, এরা আসলে ইউরোপ ছেড়ে আবার সিরিয়ায় ফিরে যাবার চেষ্টা করছে। তারা ইউরোপ ত্যাগের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে এবং সে জন্য যে অবৈধ পথে তারা এসেছিল -সেই অবৈধ পথেই আবার তুরস্ক হয়ে সিরিয়া ফিরে যেতে চাইছে। বিবিসির সংবাদদাতার কাছে জাকারিয়া বলছিলেন, এর কারণ কি। জার্মানির ব্যাডেন উর্টেমবার্গে ছিলেন জাকারিয়া। সেখান থেকেই তার যাত্রা শুরু। তিনি বলছিলেন, "আমি এই দেশে এসেছিলাম দু বছর আগে। " "আমি ভেবেছিলাম, এখানেই থাকবো জীবনে উন্নতি করবো, এবং জার্মানদের দেখিয়ে দেবো যে আমরা শুধু শরণার্থী নই।" জাকারিয়া "কিন্তু আমার মনে হচ্ছে আমি এখানে একজন বহিরাগত। জার্মান সমাজের সাথে আমাদের কোন যোগাযোগ তৈরি হয় নি। আমরা এ সমাজে মিশতে চেষ্টা করেছি - কিন্তু সত্যি বলতে কি জার্মানরা খুবই শীতল, তারা আমাদেরকে গ্রহণ করার চেষ্টাও করতে চায় না।" তিনি বলছিলেন, "আমি যা অর্জন করবো ভেবেছিলাম তার কিছুই করতে পারি নি, এক শতাংশও নয়। শুধু আমার ক্ষেত্রেই যে এমন হয়েছে তা নয়। এরকম আরো অনেক আছে।" "তাই আমি ঠিক সেই চোরাই পথ দিয়েই সিরিয়ায় ফিরে যাচ্ছি - যে পথ দিয়ে আমি এখানে এসেছিলাম।" পর দিন জাকারিয়া পৌঁছালেন গ্রিসের থেসালোনিকি শহরে। এই শহরের বাস স্টেশনটি জাকারিয়ার মতো সিরিয়ানদের জন্য যানবাহনের একটা বড় কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। মনে করা হয়, এ পথ দিয়ে প্রতি সপ্তাহে শত শত লোক যাচ্ছে। জাকারিয়া বলছিলেন দেশে ফেরার জন্য পথে নেমেই তিনি কতটা উত্তেজিত। "আমি এত অধীর হয়ে উঠেছি যে - দেশে পৌঁছানোর জন্য আমার তর সইছে না। যদিও এই পথটা কঠিন, এর ওপর আছে ঠান্ডা আর বৃষ্টি।" এখানে ৫০ জনেরও বেশি সিরিয়ান জড়ো হয়েছে যারা সিরিয়ার পথে তুরস্ক সীমান্তের উদ্দেশ্যে পাঁচ ঘন্টার এই বাস-যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে। এদের মধ্যে শিশুরা আছে, একাধিক পরিবার আছে, অনেক মহিলা আছে যাদের কোলে শিশু। সিরিয়ার পথে তুরস্কে ঢুকতে থেসালোনিকিতে জড়ো হয়েছেন এই সিরিয়ানরা কেন তারা এই বিপদ সংকুল পথ দিয়ে সিরিয়া ফিরে যাচ্ছেন? এ কথা জিজ্ঞেস করলে দেখা যায়, সবারই আছে নিজ নিজ কারণ। পর দিন জাকারিয়া এসে পৌঁছালেন গ্রিস-তুরস্ক সীমান্তে। বেশ রাত হয়েছে। অবৈধ পথ দিয়ে সীমান্ত পার হয়ে তুরস্কে ঢোকার এটাই সময়। এ জন্য সিরিয়ানদের দলটি তৈরি হচ্ছে। সবারই ভেতরে একটা চাপা উত্তেজনা - কারণ এই পথ দিয়ে সীমান্ত পার হতে ��িয়ে অনেকেই এর আগে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। সীমান্ত পেরোনোর আগে জার্মানীর উদ্দেশ্যে জাকারিয়ার শেষ বার্তা ছিল এই রকম। "আমার জন্য জার্মানি বা অন্য কোনো ইউরোপীয় দেশে ফিরে যাওয়া অসম্ভব। আমরা মুসলিম, কিন্তু ওরা বলে আমরা সন্ত্রাসী। আমাদের দেখলে তারা ভয় পায় - যেন আমরা কোন দানব, মানুষ নই। " বিবিসির সংবাদদাতারা পরে জানতে পেরেছেন যে জাকারিয়া সহ পুরো দলটির সবাই নিরাপদে সীমান্ত পার হতে পেরেছে। আরো পড়ুন: পাকিস্তানের আর্মি ও নওয়াজ শরীফের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ? এক বছরে ধূমপায়ী কমেছে দশ লাখ, রহস্য কী? মমতাকে এড়িয়ে কেন তিস্তা চুক্তি করবে না ভারত মাদক বিরোধী অভিযানে পাচারের বিরুদ্ধে কতটা নজর দেয়া হচ্ছে? দু'বছর আগে যে লক্ষ লক্ষ অভিবাসী যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে পালিয়ে জার্মানি সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছিল - তাদের মধ্যে অনেকেই এখন আবার সিরিয়ায় ফিরে যাচ্ছে। +text: রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে আটক করা হয় গত ডিসেম্বরে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনা অনুসন্ধানের সময় রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা লংঘনের দায়ে তাদের এ শাস্তি দেয়ার কথা জানিয়েছে আদালত। সাজা পাওয়া দুই সাংবাদিক হলেন- ওয়া লোন এবং কিয়াও সো উ। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছিল যখন তাদের হাতে অফিসিয়াল ডকুমেন্ট ছিলো এবং সেগুলো গ্রেফতারের আগ মূহুর্তেই পুলিশ তাদের হাতে দিয়েছিল। দুই সাংবাদিকই নিজেদের নির্দোষ দাবি করে বলেছেন পুরো বিষয়টিই পুলিশের সাজানো ছিলো। মিয়ানমারের এই ঘটনাকে মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য একটি পরীক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। রায়ের পর ওয়া লোন বলেন, "আমি ভীত নই। আমি কোন অন্যায় করিনি। আমি ন্যায় বিচার, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি"। কারাদণ্ড পাওয়া দুই সাংবাদিকই গত বছর ডিসেম্বর থেকে আটক রয়েছেন। বিচারক ইয়ে লুইন বলেছেন, "এই দুজন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই রাষ্ট্রীয় স্বার্থের ক্ষতি করেছেন"। বিবিসি সংবাদদাতা নিক বিয়াকে ইয়াঙ্গুন থেকে জানিয়েছেন অনেকের কাছে এ রায় মুক্ত গণমাধ্যম ও গণতন্ত্রের জন্য আরেকটি ধাক্কা বলে বিবেচিত হচ্ছে। আরো পড়তে পারেন: 'গণহত্যায় দায়ী' ছয় জেনারেল, সু চি ছিলেন নিশ্চুপ 'তারা পাপ করেছে, আমি তো কোন ভুল করিনি' রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘ কী করতে পারে? যতদূর চোখ যায়, শুধু রোহিঙ্গা আর রোহিঙ্গা রাখাইনের এ ��টনা নিয়েই অনুসন্ধান করেছিলেন দুই সাংবাদিক সতর্কতা: এ প্রতিবেদনে ব্যবহৃত একটি ছবি আপনার ওপর মানসিক চাপ তৈরি করতে পারে কেন আটক হয়েছিলেন দুই সাংবাদিক? মিয়ানমারের গণহত্যার একটি ঘটনা অনুসন্ধান করেছিলেন রয়টার্সের দুই সাংবাদিক। পরে তাদের আটক করে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট লংঘনের অভিযোগ আনা হয়। রয়টার্স দাবি করে, রাখাইনে দশ রোহিঙ্গাকে হত্যার বিষয়টি উদঘাটন করেছেন এই দুই সাংবাদিক। আর সেজন্যই তাদের আশা ছিলো যে দুই সাংবাদিকের তৎপরতা জনস্বার্থ হিসেবেই বিবেচিত হবে। রয়টার্সের প্রধান সম্পাদক স্টিফেন জে এডলার বলেছেন, "যখন ওয়া লোন ও কিয়াও সো উ আটক হলো তখন আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিলো তাদের নিরাপত্তা। পরে আইনি পরিস্থিতি বুঝতে পেরে দুই সাংবাদিক ও তাদের স্বজনদের সাথে আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে ইনদিন গ্রামে যা ঘটেছে তা প্রকাশ ছিলো আমাদের দায়িত্ব"। তিনি বলেন, "আমরা অনুসন্ধানী রিপোর্টটি প্রকাশ করেছিলাম কারণ এটি নিয়ে বিশ্বব্যাপী আগ্রহ ছিলো"। নিহতদের কয়েকজন বিবিসি স্বাধীনভাবে ওই রিপোর্ট যাচাই করে দেখতে পারেনি কারণ রাখাইনে সাংবাদিকদের কাজ করার সুযোগ খুবই সীমিত। কিন্তু রয়টার্সের ওই রিপোর্টটি প্রকাশের আগে থেকেই এভাবে গণহত্যার খবর পাওয়া যাচ্ছিলো। রাখাইন মূলত নতুন করে আলোচনায় আসে গত বছর অগাস্টের আগে থেকেই, যখন সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে লাখ লাখ মানুষ রাখাইন ছাড়তে বাধ্য হয়। পরে রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে আটক করা হয় ১২ই ডিসেম্বর। কী ছিলো রয়টার্সের প্রতিবেদনে? উত্তর রাখাইনের ইনদিন গ্রামে সেনাবাহিনী ও কিছু গ্রামবাসী মিলে সারিবদ্ধভাবে একদল রোহিঙ্গাকে বসিয়ে গুলি করে হত্যা করেছিলো। ঘটনাটি ঘটেছিলো গত বছরের ২রা সেপ্টেম্বর। এ ঘটনাই উঠে এসেছিলো রয়টার্সের প্রতিবেদনে- যার তথ্য-উপাত্ত সব ওই দুই সাংবাদিকই যোগাড় করেছিলেন। তারা গ্রামবাসী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে কথা বলেন এবং ঘটনার ছবি যোগাড় করেন। ওই গ্রামের বৌদ্ধদের একটি কবর খননের নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো। এরপর ওই দশ জনকে হত্যা করা হয় যার মধ্যে অন্তত দুজনকে বৌদ্ধ গ্রামবাসীরা ও বাকীদের সেনা সদস্যরা গুলি করে হত্যা করে। এভাবেই রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিলো রয়টার্স দাবি করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞের এটিই প্রথম কোন প্রমাণ। বৌদ্ধ গ্রামবাসীরাও ঘটনা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থাটি। পরে দুই সাংবাদিককে আটকের পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ঘটনা তদন্ত করে। মিয়ানমার দাবি করে ওই দশ ব্যক্তি 'বাঙ্গালি সন্ত্রাসী' কিন্তু রয়টার্স দাবি করে এর কোন প্রমাণ তারা পায়নি। ওই দুই সাংবাদিক পরে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথেও কথা বলে যারা এখন বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে। বিবিসি বাংলার আরো খবর: 'কিছু হলে সব উত্তর পাড়ার দিকে তাকিয়ে বসে থাকে' বিটিভিতে প্রচারিত বিজ্ঞাপন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল মুঘল সম্রাজ্ঞী নুরজাহান কেন নারীবাদীদের 'আইকন' রোহিঙ্গা সংকটের এক বছর:নির্যাতিতা রোহিঙ্গা নারী মিয়ানমারে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। +text: মার্ক জাকারবার্গের কম্পিউটার-জেনারেটেড সংস্করণ ওই ভিডিওতে মার্ক জাকারবার্গককে দেখা যায় যে, তিনি তার সাফল্যের জন্যে একটি গোপন সংগঠনের তারিফ করছেন। ভিডিও ক্লিপটি একটি 'ডিপফেক', যা এআই সফটওয়্যার দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এক্ষেত্রে যেকোন ব্যক্তির একটি ফটো ব্যবহার করে তা দিয়ে ভিডিও তৈরি করা হয়। এটি এমন এক আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি, যা দিয়ে যে কারও নকল ভিডিও তৈরি করে অনলাইনে ছেড়ে দেয়া যায়। ভিডিওতে কাউকে এমন কিছু করতে বা বলতে দেখা যায়, যা হয়তো তিনি কখনোই করেননি বা বলেননি। আরও পড়তে পারেন: কোন কোন পাসওয়ার্ড হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি বাড়ায়? সরকারের নিয়ন্ত্রণ চেয়ে ফেসবুকের যত সুপারিশ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিভ্রাটে ফেসবুক, যা জানা যাচ্ছে ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে প্রতিদিন অসংখ্য কন্টেন্ট শেয়ার হয়। যার মধ্যে রয়েছে অনেক ফেক বা ভুয়া কন্টেন্ট। এর আগেও মার্কিন হাউজের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিকে নিয়ে তৈরি একটি মিথ্যা ভিডিও মুছে না ফেলার জন্যে সমালোনার ঝড় উঠেছিল। লন্ডনে ৫০০টি নতুন চাকরির ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্তের সাথে ফেসবুকের এই সিদ্ধান্তের যোগ খুঁজে পাওয়া যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই কোম্পানিটি বলছে যে সেসব চাকরির অন্তর্ভুক্ত কাজের মধ্যে আছে মেশিন-লার্নিং ভিত্তিক সফটওয়্যার নির্মাণ। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে খারাপ বিষয় শনাক্ত করতে পারবে এবং তা মুছে ফেলতে পারবে। ক্ষতিকর কন্টেন্ট পর্যালোচনা কর���ে কর্মীদের জন্যে এডিটিং টুলসও তৈরি করবে। এ বছরের শেষ নাগাদ আরও ৩ হাজার নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করবে তারা। ফেসবুকের সিলিকন ভ্যালির সদর দপ্তরের অফিসে ২০১৭ সালে দেয়া একটি ভিডিও উপস্থাপনা থেকে মিস্টার জাকারবার্গের ভিডিওটি সংগ্রহ করা হয়। ফেসবুক লগ ইন। সেখানে তার শরীরের ফুটেজের সাথে ফেসবুক প্রধানের মুখের ছবি মিলিয়ে দেয়া হয়। একজন অভিনেতার অডিও রেকর্ড করে এটির সাথে সিঙ্ক করা হয়। মি. জাকারবার্গের এই 'ডিপফেক' ভিডিওটি শেফিল্ডের শিল্প প্রদর্শনের জন্যে তৈরি করা হয়েছিল। সেটি ডিজাইন করা হয় এই দেখানোর জন্যে যে, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার মতো অন্যান্য কেলেঙ্কারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কিভাবে প্রভাবিত করে বা সেগুলো কিভাবে মানুষের মনোযোগকে বিভ্রান্ত করে। ১৬ সেকেন্ডের ভিডিও ক্লিপটি লুপ করে শনিবার ইন্সটাগ্রামে আপলোড করা হয়েছিল। মঙ্গলবার ভিডিওটির খবর জানানোর পরই এটি বিশেষত্ব পায়। "এর ফলাফল বাস্তবসম্মত- অবশ্য যদি আপনি এটি নিঃশব্দে ছেড়ে রাখেন," বলছে একটি সংবাদ মাধ্যম। কেননা এর কণ্ঠটি যে মার্ক জাকারবার্গের নয় তা স্পষ্ট বোঝা যায়। ভিডিওটি ডিপফেক হ্যাশট্যাগ দিয়ে লেবেল করা হয়। ইন্সটাগ্রামের পোস্টটি ২৫ হাজারের বেশিবার দেখা হয়েছে। ফেসবুকের মাধ্যমে সেটি শেয়ারও হয়েছে বহুবার। মানুষ যোগাযোগের জন্য অনেকাটাই ফেসবুকের ওপর নির্ভরশীল। ইন্সটাগ্রাম অ্যাপের প্যারেন্ট কোম্পানি ফেসবুকের এক মুখপাত্র বলেন, "আমরা এই কন্টেন্টটি ইন্সটাগ্রামের অন্যসব ভুল তথ্যের মতো করে একইভাবে ব্যবহার করবো।" "যদি তৃতীয় পক্ষের ফ্যাক্ট চেকার এটিকে মিথ্যা হিসেবে চিহ্নিত করে, তবে আমরা এটিকে ফিল্টার করবো।" এই কাজের সাথে জড়িত শিল্পীরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও কোম্পানির নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিবিসিকে তারা জানান যে, "এই ধরনের প্রযুক্তির মাধ্যমে সৃষ্ট শিল্পকে নতুন মাত্রার প্রোপাগান্ডা হিসেবে ব্যবহার করার আশঙ্কা রয়ে যায়। এর ফলে ফেসবুক দ্বারা সেন্সর করা আমাদের শিল্প নিশ্চয়ই কেউ দেখতে চাইবে না।" তবে ডিজিটালভাবে প্রভাবিত শিল্পের অর্থপূর্ণ নিয়ন্ত্রণকে তারা স্বাগতও জানিয়েছেন। হ্যাকারদের থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে মানুষের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হল সচেতনতা। রাজনৈতিক ক্ষেত্র তিন সপ্তাহ আগে মিজ পেলোসির মিথ্যা ভিডিওটি সরিয়ে নেবার বি��য়টি প্রত্যাখ্যান করার পর ফেসবুক যদি এখনকার এই পোস্টটি ব্লক করে, তবে তা একধরনের ভণ্ডামির পর্যায়ে পড়বে। সেই ক্লিপটি 'ডিপফেক' প্রযুক্তির সাহায্য তৈরি না হলেও সেটি এমনভাবে তৈরি যেখানে একজন গণতান্ত্রিক রাজনীতিকের বক্তব্য বিকৃত হয়ে প্রকাশ পায়। মিজ পেলোসি দৃঢ়ভাবে ফেসবুকের সমালোচনা করে বলেন, "এখন তারা এমন কিছু অনলাইনে আনছে যা তারা জানে যে মিথ্যা।" "আমি এটা মেনে নিতে পারি... কিন্তু ফেসবুক সাধারণ মানুষের কাছে মিথ্যা বলছে।" ওয়াশিংটনপোস্ট থেকে জানা যায় যে, মি. জাকারবার্গ ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্যে মিজ পেলোসির সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু মিজ পেলোসি কোনও সাড়া দেননি। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, তারা তাদের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গকে নিয়ে তৈরি একটি ফেক বা ভুয়া ভিডিও মুছে ফেলবে না। +text: জো বাইডেন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের শহরে 'মৃত্যু এবং ধ্বংসলীলা' চালাতে দেয়ার জন্য পোর্টল্যান্ডের ডেমোক্রেটিক মেয়র টেড হোয়েলারকে দায়ী করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তবে মি. বাইডেন বলেছেন, 'বেপরোয়াভাবে সহিংসতায় উস্কানি দিয়েছেন' মি. ট্রাম্প। শনিবার ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ট্রাম্পপন্থী একটি মিছিলের কর্মীদের সংঘর্ষ হলে গুলিতে একজন নিহত হয়। পুলিশের গুলিতে আফ্রিকান-আমেরিকান জর্জ ফ্লুয়েডের মৃত্যুর পর থেকে পুলিশের নিষ্ঠুরতা এবং বর্ণবৈষম্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠেছে পোর্টল্যান্ড। মিনিয়াপোলিসে গত ২৫শে জর্জ ফ্লুয়েড নিহত হওয়ার ঘটনায় দেশে বিদেশে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। সামাজিক মাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক লেখালেখির পর শহরে পাল্টা জমায়েত করতে না আসার জন্য সতর্ক করে দিয়েছেন মেয়র হোয়েলার। ''আপনারা যারা আজ সকালে টুইটারে লেখালেখি করছেন যে, আপনারা প্রতিশোধ নিতে পোর্টল্যান্ড আসবেন, আমি আপনাদের আহবান জানাচ্ছি যে, দূরে থাকুন,'' তিনি লিখেছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনার পাল্টা জবাব দিয়ে তিনি বলছেন, ''মার্কিন প্রেসিডেন্টই বরং বিদ্বেষ আর বিভেদ তৈরি করছেন।'' আরো পড়তে পারেন: ট্রাম্প দেশকে 'বিভক্ত করেছেন' - বাইডেন ও তার রানিং মেট কমালা মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সম্পর্কে কিছু তথ্য যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন ২০২০: কে এগিয়ে- ট্রাম্প না বাইডেন? ট্রাম্পকে ভোট দেয়���য় ভাঙলো ২২ বছরের সংসার পোর্টল্যান্ডে বিক্ষোভ করার সময় একজনকে আটক করছে পুলিশ 'এটা ট্রাম্পের আমেরিকা' রবিবার বেশ কয়েকটি টুইট বার্তায় মি. ট্রাম্প বলেছেন, 'একজন বোকা মেয়রকে নিয়ে পোর্টল্যান্ড কখনোই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবে না।'' তিনি শহরে ফেডারেল ফোর্স পাঠানোরও পরামর্শ দিয়েছেন। মি. বাইডেনকে অভিযুক্ত করে মি. ট্রাম্প বলেছেন, তিনি নেতৃত্ব দিতে অনাগ্রহী। এরপরে এক বিবৃতিতে জো বাইডেন বলছেন, ''(ট্রাম্প) হয়তো মনে করেন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ে টুইট করলে তার অবস্থান শক্ত হবে- সংঘর্ষ থেকে সমর্থকদের বিরত করতে তার ব্যর্থতাই বলে দেয় যে, তিনি আসলে কতটা দুর্বল।'' পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের অন্যতম প্রধান প্রতিশ্রুতিগুলোর একটি আইনশৃঙ্খলা, যেখানে জো বাইডেনকে তিনি অপরাধের ক্ষেত্রে নমনীয় বলে দেখানোর চেষ্টা করেন। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারির ভারপ্রাপ্ত প্রধান চ্যাড উলফ বলেছেন, পোর্টল্যান্ডের ডেমোক্র্যাটিক কর্মকর্তারা 'বেআইনি কর্মকাণ্ড ও বিশৃঙ্খলা' বরদাস্ত বেড়ে ওঠার সুযোগ দিয়েছেন। তারা বলছেন, সমস্যার সমাধানে সব পদক্ষেপ নিয়েই ভাবা হচ্ছে। তবে ডেমোক্র্যাটরা পাল্টা জবাব দিয়ে বলেছেন, মি. ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির আওতায় সহিংসতা ঘটছে এবং তার বক্তব্য দিয়ে পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলছেন। পোর্টল্যান্ডের ওই গুলির ঘটনা তদন্ত করছে পুলিশ। শহরটিতে প্রায় একমাস ধরে বিক্ষোভ চলছে। পোর্টল্যান্ড পুলিশ একটি বিবৃতি জানিয়েছে, ''সাউথইস্ট থার্ড অ্যাভিনিউ এবং সাউথইস্ট আলডার স্ট্রিটের দিক থেকে গুলির শব্দ পাওয়া শুনতে পেয়েছেন কর্মকর্তারা। তারা সেখানে গিয়ে বুকে গুলি লাগা একজন ব্যক্তিকে দেখতে পায়।'' অরেগনের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে বলা হচ্ছে, মৃতদেহের পাশ থেকে 'ক্যামোফ্লেজ গিয়ার'সহ পুলিশের সমর্থনে ব্যবহৃত হয়, এমন সব জিনিসপত্র পাওয়া গেছে। আরেকটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ওই ব্যক্তির সঙ্গে থাকা একজন ব্যক্তিকে আটক করার চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে মৃত ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ। শহরে চলা বিক্ষোভের সঙ্গে এই গুলির ঘটনার কোন যোগসূত্র আছে কিনা, তাও পুলিশ পরিষ্কার করেনি। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: প্রতিদিন বেতন কাটা যাচ্ছে মেসির, কত টাকা হারাচ্ছেন? মহামারিকালে নতুন চাকরি পেতে যে আটটি কাজ করতে পারেন 'ছেলে অপরাধ করলে বিচার করেন, গুম করতে তো পারেন না' তরুণদের মধ্যে কি কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ছে? অরেগনে পোর্টল্যান্ডের সহিংসতা নিয়ে পরস্পর বাকযুদ্ধে জড়িয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার ডেমোক্রেটিক প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইবেন। +text: প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করছেন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা। মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে যান ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জোটের শীর্ষ ১০জন নেতা। এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার ও রফিকুল ইসলাম এবং নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন। দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলা ওই বৈঠকে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ও সমর্থকদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ধরেন। তবে সব জানানোর পরও বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা সন্তোষজনক নয় এমন অভিযোগ তুলে বৈঠক থেকে ওয়াক আউট করার কথা জানিয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। আরও পড়তে পারেন: 'আতঙ্কের মধ্যে আছি' - সহিংসতায় উদ্বিগ্ন ভোটাররা খুলনা-২: তরুণ ভোটারদের চিন্তা নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে নির্বাচনী সহিংসতা ভোটারদের ওপর কী প্রভাব ফেলছে পরে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ উল্লেখ করে বলেন, "আমাদের প্রার্থীদের ওপর যে তাণ্ডব চলছে সেই পরিস্থিতিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছ থেকে আমরা সেই ধরণের কোন আচরণ পাইনি, এমন যে তিনি এটাতে কোন গুরুত্ব দিচ্ছেন না।" এ সময় দেশব্যাপী বিএনপি প্রার্থীদের ওপর বিভিন্ন হামলার ঘটনার উল্লেখ করেন তিনি বলেন, "সরকার ও নির্বাচন কমিশন যৌথভাবে এই নির্বাচনকে বানচাল করার চেষ্টা করছে। নির্বাচনের ন্যূনতম পরিবেশ তারা সৃষ্টি করতে পারছে না।" এই নির্বাচন কতটুকু সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, "নির্বাচনী প্রচারণা দেখে মনেই হয় না যে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী আছে। এ ধরণের হামলা, গ্রেফতা�� যদি চলতেই থাকে তাহলে ভোটাররা ভোট দিতে যাবে কিভাবে? " বৈঠকে যোগ দেয়ার আগ মুহূর্তে বিএনপি মহাসচিব বিবিসি বাংলাকে জানান যে, সারাদেশে নির্বাচনী প্রচারণার সময় তাদের প্রার্থীদের ওপর যে হামলা হচ্ছে সেই উদ্বেগের কথা জানাতেই তারা নির্বাচন কমিশনে এসেছেন। মির্জা ফখরুল বলেন, "আমাদের প্রার্থীদের ওপর একের পর এক হামলা হচ্ছে। অথচ এজন্য আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোন ধরণের সহযোগিতা পাচ্ছি না। আমরা এক ধরণের অসহায় অবস্থার মধ্যে আছি।" "এখন নির্বাচনের আগে যে ক'দিন বাকি আছে সে সময়ে আমাদের প্রার্থীরা যেন নির্বিঘ্নে প্রচারণা চালাতে পারে, সেই দাবি নিয়েই আমরা এসেছি।" সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুলসহ ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা। তবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের এসব অভিযোগের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এখনো কোন বক্তব্য দেয়া হয়নি। এদিকে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা আজ ধানের শীষের পক্ষে ঢাকায় যে পথসভা কর্মসূচি করবেন বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল, তা স্থগিত করা হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই স্থগিতের কথা জানানো হয়। বিবৃতিতে ক্ষমতাসীন দল ও পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা 'প্রশ্নবিদ্ধ' উল্লেখ করে বলা হয় যে বাধার কারণেই এই প্রচারণা স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে ঐক্যফ্রন্ট। দেশব্যাপী নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে নিজ দলের প্রার্থীদের ওপর অব্যাহত সহিংস হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে কাছে প্রতিকার চাইতে গিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। তবে আলোচনা সন্তোষজনক হয়নি অভিযোগ তুলে আলোচনা অসম্পূর্ণ রেখেই তারা ওয়াকআউট করেন। +text: চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার পর্যন্ত ২৬ জন নিহত। এই ভাইরাসটি যে প্যাথোজেন পরিবারের, তার নাম করোনাভাইরাস, যার কারণে এর আগে সার্স ও মার্স ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছিল। সার্সে আক্রান্তদের ৯% এবং মার্সে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৩৫% মারা গেছেন। হঠাৎ এই নতুন ভাইরাসটি কোত্থেকে এলো এবং এটা কতোটা ভয়াবহ? বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যে ধরনের করোনাভাইরাস থেকে সার্স ও মার্স ভাইরাসের জন্ম হয়েছিল এবং এখন নতুন করে যে ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিয়েছে সেগুলোর কোনটির উৎপত্তি মানুষ থেকে হয়নি। বরং এসবের জন্ম হয়েছে প্রাণী থেকে। অনেক প্রাণীই তাদের শরীরে বিপদজনক ভাইরাস বহন করে কিন্তু আমাদের সৌভাগ্য যে এসব ভাইরাস এক লাফে মানবদেহে চলে আসতে পারে না। "বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একটি বাধা আছে এবং ভাইরাসটি সেই বাধা অতিক্রম করতে পারে না," বলেন ওয়ারিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী প্রফেসর অ্যান্ড্রু ইস্টন। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। আরো পড়তে পারেন: মাস্ক পরে কি ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানো যায়? ভাইরাস আতঙ্কে অবরুদ্ধ একের পর এক চীনা শহর রহস্যময় ভাইরাস আরো ছড়িয়েছে, বাংলাদেশে সতর্কতা "তবে কখনো কখনো কারো শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা যদি দুর্বল থাকে, অথবা অন্য কোন বিশেষ কারণ থাকে, তখনও ভাইরাসটি প্রাণী থেকে মানুষের শরীরেও চলে আসতে পারে।" আর এটি ঘটে ভাইরাসটির রূপান্তরের মধ্য দিয়ে। অর্থাৎ প্রাণীর দেহে ওই ভাইরাসটির জিনগত গঠন যেরকম ছিল তাতে সে পরিবর্তন ঘটিয়ে মানুষের শরীরে আশ্রয় নিতে পারে। "নতুন পরিবেশে বেড়ে ওঠার জন্য ভাইরাসটিকে নিজের গঠনে কিছু পরিবর্তন ঘটাতে হয়।" বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ঘটনা বিরল এবং এই প্রক্রিয়ায় করোনাভাইরাস যখন মানুষের শরীরে প্রবেশ করে তখন সেটা ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। সব ধরনের করোনাভাইরাসই অতোটা বিপদজনক নয়। কিন্তু যেসব ভাইরাস পশুপাখি থেকে মানুষে চলে আসতে পারে সেগুলো খুবই বিপদজনক হয়। প্রফেসর ইস্টন বলেন, "যখন একটি ভাইরাস এক প্রজাতি থেকে আরেক প্রজাতিতে চলে যায় তখন আগে থেকে ধারণা করা যায় না যে এটি ঠিক কী ধরনের কাণ্ড ঘটাবে। তবে এটি তার নতুন আবাসস্থলে গিয়ে প্রাথমিক পর্যায়েই মারাত্মক রূপ নিতে পারে।" এর পেছনে কারণ হচ্ছে, যখন ভাইরাসটি কোন প্রাণী থেকে হঠাৎ মানুষের শরীরে গিয়ে প্রবেশ করে, তখন আমাদের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা তাকে চিনতে পারে না। কারণ এই ভাইরাস মোকাবেলায় মানবদেহের পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। ফলে ভাইরাসটির কারণে মানুষের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যেতে পারে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের ক্ষেত্রেও একই ধরনের সমস্যা হয়। উহান শহরের ট্রেন স্টেশনে লোকজনের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। "যেমন জলজ পাখি থেকে যে ফ্লু ভাইরাসটি মানুষের মধ্যে আসে, তখন সংক্রমণের তীব্রতা অনেক বেড়ে যায়।" ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ সবচেয়ে মারাত্মক হয়ে উঠেছিল ১৯১৮ থেকে ১৯১৯ সালে। ওই ভাইরাসে পাঁচ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ধারণা করা হয় যে ওই ভাইরাসটি এসেছিল পাখি থেকে। বর্তমানের করো���াভাইরসটিও যে এরকম প্রাণঘাতী হয়ে উঠবে তার কোন ইঙ্গিত চিকিৎসকরা এখনও দেখতে পাননি। তবে অতীতেও এধরনের সংক্রমণের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য খাতে বড় ধরনের উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। করোনাভাইরাস কি দ্রুত ছড়াতে পারে? এটা সুখবর - অন্তত প্রাথমিক পর্যায়ে - যে ভাইরাসটি প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে আসে সেটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে পারে না। প্রফেসর ইস্টন বলেন, "এটা আরেকটা বাধা। ভাইরাসটিকে এই বাধাও অতিক্রম করতে হবে।" তবে এই অবস্থারও দ্রুত পরিবর্তন ঘটতে পারে এবং এরকম হলে পরিস্থিতি খুবই খারাপ হয়ে যেতে পারে। করোনাভাইরাস আছে নানা ধরনের। সর্বশেষটি পাওয়া গেছে চীনে। "করোনাভাইরাসের মতো ভাইরাস খুব দ্রুত নিজেদের মধ্যে পরিবর্তন ঘটাতে পারে।" ভাইরাসটি যদি নিজের জিনে কিছু পরিবর্তন ঘটাতে পারে তাহলে সেটি মানুষ থেকেও মানুষে ছড়াতে পারবে। তখন এই ভাইরাসটি খুব দ্রুত বহু সংখ্যক মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। চীনে করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে এরকমটি ঘটেছে আর সেকারণেই ভাইরাসটি যাতে ছড়াতে না পারে সেজন্যে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে ভাইরাসটি কতো দ্রুত ছড়াতে পারে সেবিষয়ে এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানা সম্ভব হয়নি। "যদি এই ভাইরাসটি কারো মধ্যে সংক্রমিত হয়ে থাকে সেটা হয় ওই লোকটির রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতায় দুর্বলতাসহ কিছু পরিস্থিতির কারণে।" "এখন কথা হচ্ছে একজন সুস্থ মানুষ এই ভাইরাসটিকে প্রতিরোধ করতে পারবে কীনা। কিছু ভাইরাস আছে যেগুলো খুব সহজেই ছড়াতে পারে আবার কিছু ভাইরাস সেটা পারে না। নতুন ভাইরাসটি কোন ধরনের এই প্রশ্নের উত্তর জানা প্রয়োজন।" কী করা দরকার? দুঃসংবাদ হচ্ছে এর কোন ওষুধ বা চিকিৎসা নেই। "ভাইরাসনাশক ওষুধের সংখ্যা খুবই কম।" তবে এই ভাইরাস প্রতিরোধে আরো কিছু ব্যবস্থা নেওয়া যায়। সেগুলো খুব সহজ কিছু ব্যবস্থা: যেমন হাত ধোওয়া এবং টিস্যু ব্যবহার করা। মাস্ক পরে সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব। প্রফেসর ইস্টন বলেন, "পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদেরকে সব ধরনের ক্ষতিকর জীবাণু থেকে রক্ষা করে। এখনও পর্যন্ত এটাই আমাদের অস্ত্র যা দিয়ে এই ভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে পারি।" এছাড়াও এই ভাইরাসটি যাতে ছড়াতে না পারে সেজন্য কর্তৃপক্ষ কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে সেটাও জরুরি। "যারা আক্রান্ত হবেন তাদেরকে খুব দ্রুত চিহ্নিত করতে হবে যাতে তাদেরকে সহযোগিতা করা যায়। আসল কথা হচ্ছে এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে এদের মাধ্যমে ভাইরাসটি আর ছড়াতে না পারে।" সার্স ও মার্স ভাইরাসের ঘটনায় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সেই অভিজ্ঞতা হয়েছে। এই অভিজ্ঞতা এখন কাজে লাগানো প্রয়োজন। আরো পড়তে পারেন: সীমান্ত হত্যা নিয়ে বিএসএফের যুক্তি মানছে না বিজিবি মিয়ানমারের গণমাধ্যমে যেভাবে এসেছে আইসিজে'র রায় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিরুদ্ধে কিছু শিক্ষক করোনাভাইরাসের যে ধরনটি ইতোমধ্যেই চীনে ২৬ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে সেটি খুবই পরিচিত ও ভীতিকর বলে চিকিৎসকরা উল্লেখ করছেন। +text: বরিস জনসন- ব্যতিক্রমী এক রাজনীতিক মঙ্গলবার তিনি ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা নির্বাচিত হয়েছেন। সেই সুবাদে বুধবার তিনি হচ্ছেন নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। ছোটবেলায় পুরো পৃথিবীর রাজা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন বরিস জনসন। ৫৫ বছর বয়সে হয়েছেন ক্ষমতাসীন টোরি পার্টির রাজা। ব্রেক্সিট অর্থাৎ ব্রিটেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের করে আনার জন্য উদগ্রীব যে জনগোষ্ঠী তারাই এখন তার অনুগত প্রজা। অহমিকা আর ব্যক্তিত্বে মোড়া রাজনীতিক ব্রিটেনে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বিতর্কিত রাজনীতিক কে? এই প্রশ্নে ১০ জনের আট জনই হয়তো বলবেন - বরিস জনসন। শুধুই যে বিতর্কিত তাই নয়, অনেক দিক থেকে ব্যতিক্রমীও বটে। বাচনভঙ্গি, শব্দের ক্ষুরধার ব্যবহার, চাহনি, মজা করে কথা বলার অসামান্য ক্ষমতা, এলোমেলো চুল, ব্যক্তিগত জীবন - এসবের বিবেচনায় তিনি অন্য দশজন রাজনীতিকের থেকে আলাদা। বিয়ে না করেই বসবাস করছেন তার থেকে প্রায় ২৫ বছরের বয়সে ছোটো এক বান্ধবীর সাথে। বরিস জনসন এবং ক্যারি সিমন্ডস হবেন ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের প্রথম অবিবাহিত দম্পতি। বিবিসির রাজনীতি বিষয়ক সম্পাদক ল্যরা কুনসবার্গ বলছেন, "বরিস জনসন এমন একজন রাজনীতিক যাকে অবজ্ঞা করা অসম্ভব, তার অহমিকা মিশ্রিত ব্যক্তিত্বের সাথে পাল্লা দেওয়া কোনো রাজনীতিকের পক্ষে দুরূহ কাজ।" ২০০৮ সাল থেকে দু দফায় লন্ডনের মেয়র হিসাবে দায়িত্ব পালনের পর ২০১৫ সালে বরিস জনসন যখন আবার টোরি পার্টির টিকেটে সংসদ নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেছিলেন, "আমি মাঠে আমার তারকা খেলোয়াড়দের চাই।" অবশ্য পরে ব্রেক্সিট গণভোটের সময় বরিস জনসনই ডেভিড ক্যামেরনের পিঠে ছুরি মারেন। নেতার বিরুদ্ধে গিয়ে ব্রেক্সিটের পক্ষে প্রচারণা শুরু করেন। ব্রেক্সিট শিবিরের নেতা হয়ে পড়েন। ব্রেক্সিটপন্থীদের প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেছেন বরিস জনসন আরও পড়ুন: সৌদি আরব নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের ভেতরে দ্বন্দ্ব গোপন বার্তায় ট্রাম্পকে নিয়ে যা বলেছেন ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত মার্কিন নাগরিক আলেকজান্ডার বরিস দ্য ফেফেল জনসনের জন্ম নিউ ইয়র্কে। ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি মার্কিন নাগরিকত্ব রেখে দিয়েছিলেন। ব্রিটেনের অভিজাত সমাজের আদর্শ প্রতিনিধি তিনি। বাবা ছিলেন কূটনীতিক। কনজারভেটিভ পার্টির হয়ে ইউরোপীয় সংসদের সদস্যও হয়েছিলেন। অত্যন্ত অভিজাত স্কুল ইটনে পড়ে গ্রাজুয়েশন করেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রাবস্থায় ছাত্র ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। যদিও এখন তাকে কনজারভেটিভ পার্টির কট্টর ডানপন্থী অংশের প্রতিনিধি হিসাবে বিবেচনা করা হয়, ছাত্র জীবনে অল্প সময়ের জন্য বামধারার সোশাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতে যুক্ত হয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরুনোর পর পেশা হিসাবে সাংবাদিকতাকে বেছে নেন। দি টাইমস পত্রিকায় কাল্পনিক একটি উদ্ধৃতি ব্যবহারের জন্য চাকরি খুইয়েছিলেন। তারপর আরো দুই একটি পত্রিকায় কাজ করার পর যোগ দেন বিখ্যাত দ্য টেলিগ্রাফে। ব্রাসেলসে ঐ পত্রিকার প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করতেন। ২০০১ সাল থেকে তৎকালীন বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টির টিকেটে এমপি নির্বাচিত হলেও তিনি কখনও ছায়া মন্ত্রিসভায় ঢোকেননি। দলের কয়েকজন সিনিয়র নেতা তাকে তেমন পছন্দ করতেন না। ২০০৮ সালে সংসদের রাজনীতি ছেড়ে তিনি লন্ডনের মেয়র নির্বাচিত হন। এবং তখনই ব্রিটেনের রাজনীতিতে ভিন্ন এক মাত্রা পেয়ে যান বরিস জনসন। মুসলিম হেরিটেজ বরিস জনসনের প্রপিতামহ অর্থাৎ তার দাদার বাবার নাম ছিল আলী কেমাল। জাতিতে তুর্কি মুসলিম। বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে আলী কেমাল প্রথমে একজন সাংবাদিক ছিলেন। পরে রাজনীতিতে যোগ দেন। অটোম্যান মন্ত্রিসভায় খুব কম সময়ের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। ১৯২০ এর দশকে আলী কেমাল গণপিটুনিতে নিহত হন। পত্রিকায় তার এক কলামে বোরকা পরা নারীদের চিঠির বাক্সের সাথে তুলনা করার পর প্রচণ্ড সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন বরিস জনসন বাবার সূত্রে তার বংশের ইতিহাস জানতে, স্বজনদের ��াথে দেখা করতে বরিস জনসন একবার তুরস্কে গিয়ে বেশ কিছুদিন ছিলেন। তার মুসলিম হেরিটেজের কথা মাঝেমধ্যেই প্রকাশ্যে বলেন বরিস জনসন। । তবে সম্প্রতি বোরকা পরা নারীদের নিয়ে তার এক কটু মন্তব্যের পর তাকে মুসলিম বিদ্বেষী হিসাবে অনেক গালমন্দ শুনতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীত্বের স্বপ্ন ২০১৬ সালে বেক্সিট গণভোটে হারার পর ডেভিড ক্যামেরন প্রধানমন্ত্রীত্ব এবং দলের নেতৃত্ব ছাড়ার পর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রতিযোগিতায় যোগ দেন বরিস জনসন। তবে টেরিজা মের সাথে এঁটে উঠতে পারবেন না বুঝতে পেরে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ান। পরে কনজারভেটিভ পার্টির ব্রেক্সিটপন্থীদের চাপে বরিস জনসনকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী করেন টেরিজা মে। কিন্তু যেভাবে টেরিজা মে ইউরোপীয় কমিশনের সাথে ব্রেক্সিট চুক্তির জন্য মীমাংসা করছিলেন তাতে প্রচণ্ড নাখোশ ছিলেন বরিস জনসন। ২০১৮ সালের জুলাইতে মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর তার ব্রেক্সিট চুক্তিতে সংসদের অনুমোদন পেতে বার বার ব্যর্থ হওয়ার পর চাপের মুখে টেরিজা মে যখন দলের নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানান, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার নতুন সুযোগ লুফে নেন বরিস জনসন। টেরিজা মে তার ব্রেক্সিট চুক্তিতে অনুমোদন পেতে ব্যর্থ হয়ে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর নতুন করে প্রধানমন্ত্রীত্বের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন বরিস জনসন ৩১শে অক্টোবরের মধ্যে প্রয়োজনে কোনো চুক্তি ছাড়াই তিনি ব্রিটেনকে ইইউ জোট থেকে বের করে আনবেন - এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে কনজারভেটিভ পার্টির ব্রেক্সিটপন্থী শিবিরের প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠেন তিনি। মঙ্গলবার ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর দেখা যায় কনজারভেটিভ পার্টির ৬৭ শতাংশ সদস্যের সমর্থন পেয়ে দলের নেতা হয়েছেন বরিস জনসন। বুধবার হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে ব্রেক্সিট নিয়ে তার দল, এবং পুরো ব্রিটিশ রাজনীতিতে যে বিভেদ, মতানৈক্য চলছে, তাতে অক্টোবরের মধ্যে তিনি তার দেশকে ইইউ থেকে বের করে আনতে পারবেন কিনা- তা নিয়ে বিরাট সন্দেহ রয়েছে। যদি না পারেন, বরিস জনসনের প্রধানমন্ত্রীত্বের মেয়াদ খুবই সংক্ষিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী বছর এই মাসে অর্থাৎ ২০২০ সালে তিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী থাকবেন তা নিয়ে অনেক বাঘা বাঘা রাজনৈতিক বিশ্লেষকও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। একবছর আগেও তার সবচেয়ে কট্টর সমর্থকও যা স্বপ্নেও ভাবেননি, সেটাই অর্জন করেছেন বরিস জনসন। +text: হাইকোর্ট থেকে জামিন নিতে আসা তিন ব্যক্তি। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এরা আদালত প্রাঙ্গণে বসে অপেক্ষা করছেন। দিন শেষে ফিরে যাচ্ছেন, পরেরদিন আবার আসছেন। এদের একজন মো: মিলন মিয়া গত পাঁচদিন ধরে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে আসা-যাওয়ার মধ্যে আছেন। ৫৫ বছর বয়সী মিলন মিয়ার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মজলিসপুর ইউনিয়নের আনন্দপুর। নির্বাচনের কয়েকদিন আগে একটি মামলায় তিনি অভিযুক্ত। তবে তাঁর বিরুদ্ধে কী অভিযোগ - সেটি সুস্পষ্টভাবে বলতে পারছেন না তিনি। এ মামলায় মোট ২৪জনকে আসামী করা হয়েছে। পেশায় বর্গাচাষী মিলন মিয়া এখনো পর্যন্ত মামলার জামিনের জন্য ঢাকায় আসা-যাওয়া বাবদ আট হাজার টাকা খরচ করেছেন তিনি। বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে ধার করে এই টাকার জোগান দিয়েছেন তিনি। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: রিজার্ভ চুরির আগে চাকরি চেয়েছিল হ্যাকাররা নদীকে 'জীবন্ত সত্তা' ঘোষণা - এর মানে কী? 'বাইরে থেকে মার চিৎকার শুনতেছি আমরা...' এই মামলায় অভিযুক্ত আরেকজন জানালেন, তাদের বিরুদ্ধে বোমাবাজির অভিযোগ আনা হয়েছে। হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে আরেকটি দলের সাথে দেখা হলো যারা ঝিনাইদহের কোর্ট চাঁদপুর থেকে এসেছেন হাইকোর্টে আগাম জামিনের জন্য। কথা বলছিলাম সে দলের একজন বৃদ্ধের সাথে যার বয়স প্রায় ৭০ বছর। তিনি নিজের নাম প্রকাশ করতে চাইলেন না। তাঁর ধারণা মামলা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে সাথে কথা বললে আরো মামলা হবে। "আমি ওসব বুঝিনা রাজনীতি। আমি পাঁচ ওয়াক্ত আল্লাহু আকবর বলে নামাজ পড়ি। আমার কোন দল-ফল নেই। আমি কিছু বুঝিনা," বলছিলেন সে বৃদ্ধ। আওয়ামী লীগের অফিস পোড়ানোর অভিযোগে যে মামলা দায়ের করা হয়েছে সেখানে তিনি অন্যতম অভিযুক্ত। মো: মিলন মিয়া গত পাঁচদিন ধরে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে আসা-যাওয়ার মধ্যে আছেন বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বলেছে, বাংলাদেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বহু মামলা হয়েছে, যেখানে গণহারে অনেক মানুষকে আসামী করা হয়েছে। হাইকোর্ট যারা জামিনের জন্য এসেছেন তাদের অনেকেই বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সাথে জড়িত। অনেকে আছেন যারা রাজনীতির সাথে জড়িত না হলেও বিএনপি-জামায়াতে ইসলামির প্রতি পরোক্ষ সমর্থন রয়েছে। আবার এদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা কোন রাজনীতির সাথে জড়িত নয়। সংবাদমাধ্যমে�� প্রতিবেদনে দেখা গেছে, পঙ্গু কিংবা শারীরিকভাবে অসমর্থ ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশের উপর হামলা কিংবা নাশকতার মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইলিয়াস কাঞ্চনের নি:সঙ্গ লড়াই ভুয়া মামলায় ক্ষতিপূরণ চাওয়ার ব্যবস্থা আছে? বাংলাদেশের ফৌজদারি আইনে বলা আছে, কোন ব্যক্তিকে যদি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়, তাহলে তিনি আদালতে সেটির প্রতিকার চাইতে পারবেন। তবে আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হবার পর সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি ক্ষতিপূরণের মামলা দায়ের করতে পারবেন। এমটাই বলছেন সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী মনজিল মোরশেদ। "সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি দুই ধরণের মামলা করতে পারবেন। একটি হলো ফৌজদারি আইনে মানহানির মামলা, আরেকটি হলো ক্ষতিপূরণ চেয়ে তিনি মামলা করতে পারবেন," বলছিলেন মি: মোরশেদ। তবে এ ধরণের মামলার নজীর বাংলাদেশে বেশ বিরল। এর একটি কারণ হচ্ছে বিচারের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতা। মনজিল মোরশেদ "যখন সে একটি মামলায় খালাস পায়, এটি হয়তো পাঁচ-দশ বছর লেগে যায়। তখন তাঁর আর স্পিরিট থাকেনা আবার গিয়ে পাঁচ-দশ বছর আরেকটি মামলার মধ্যে ঢুকে যাওয়া," বলছিলেন মি: মোরশেদ। যখন একটি মামলায় যখন কয়েকশ ব্যক্তিকে আসামী করা, তখন সবার যে বিচার হবে এমন কোন কথা নেই। পুলিশ যখন মামলার চার্জশীট দেয় তখন সেখানে অনেককে বাদ দেয়া হয়। কারণ কয়েকশ ব্যক্তিকে আসামী করতে হলে সবার নাম, ঠিকানা জোগাড় করে মামলার বিবরণে উল্লেখ করতে হবে। এটি বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট যখন আদালতে চার্জ গঠন করা হয় তখন অভিযুক্তের সংখ্যা আরো কমে যায়। এভাবে দুটি ধাপে অভিযুক্তের সংখ্যা কমে আসে। " এসব মামলার আল্টিমেট সমাপ্তি হয় বলে আমার ধারণা নাই। অনেক সময় দেখা যায় যে তদন্ত রিপোর্ট দুই বছরেও দিচ্ছে না। এক পর্যায়ে পুলিশ হয়তো এ ব্যাপারে কোন ইন্টারেস্ট দেখায় না," বলছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরশেদ। বাংলাদেশের ঢাকায় প্রায় সপ্তাহ-খানেক ধরেই হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে অন্যরকম একটি পরিবেশ। জামিনের জন্য শত-শত মানুষ আদালত প্রাঙ্গণে বসে আছেন। এরা এসেছেন দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে দলবদ্ধভাবে। +text: মেয়র সাঈদ খোকন আগামী ত্রিশে জানুয়ারি ঢাকা সিটি নির্বাচনে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে দলীয় মনোনয়ন পেতে বৃহস্পতিবারই মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন মেয়র সাঈদ খোকন। ফরম সংগ্রহের পর সাংবাদিকদের সাথে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেছেন তার পিতা অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র প্রয়াত মোহাম্মদ হানিফের হাত ধরে রাজনীতিতে এসেছেন তিনি। তবে পিতার অবর্তমানে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীই তার অভিভাবক এবং তিনি মনে করেন সভানেত্রী তার জন্য যেটা ভালো মনে হবে সেই সিদ্ধান্তই নেবেন। মিস্টার খোকন এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন কি না তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানামুখী আলোচনা চলছে। কারণ এবারের ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলায় সিটি কর্পোরেশনের দক্ষতা নিয়ে সরকারি দলের অভ্যন্তরেই সমালোচনা অত্যন্ত জোরালো। পাশাপাশি বারবার চেষ্টা করেও গুলিস্তান এলাকা থেকে হকারদের সরাতে না পারাসহ বেশ কিছু বিষয়েই অনেকে তাকেই দোষারোপ করে থাকেন। দলীয় কয়েকটি সভায় দলের নেতারাই এসব প্রসঙ্গ বারবার তুলে এনেছেন সাম্প্রতিক সময়ে। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকটাত্মীয় সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র পদের জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করায় অনেকেই মনে করেন এবার মিস্টার তাপসই দলীয় মনোনয়ন পেতে পারেন। আওয়ামী লীগের নগর কমিটির একজন নেতা অন্তত এক ডজন কাউন্সিলরকে সাথে নিয়ে মিস্টার তাপসের জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন দুদিন আগে। এর বাইরেও আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য হাজী সেলিমসহ আরও কয়েকজন দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এরপর থেকে মনোনয়ন নিয়ে মিস্টার খোকনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা আরও জোরালো হয়ে উঠে। এর মধ্যেই আজ মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে মিস্টার খোকন দাবি করেছেন তিনি শহরে ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করেছেন। টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে অশ্রুসজল চোখে সাঈদ খোকন বলেন, "ঢাকাবাসীর সুখে-দুঃখে, আপদে-বিপদে পাশে ছিলাম। আজ আমার রাজনৈতিক জীবনের কঠিন সময়। এই কঠিন সময়ে আমি ঢাকাবাসীর প্রতি আহবান জানাই আমার জন্য একটু দোয়া করবেন"। তিনি বলেন, "অনেক কাজ করেছি, কিছু কাজ বাকী আছে। আমি যাতে কাজগুলো শেষ করে যেতে পারি। আমি আবারও বলি এই ঢাকা শহরের মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে ছিলাম"। কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঢাকার মানুষের কাছে নিজের জন্য দোয়া চেয়ে সাঈদ খোকন বলেন, "আল্লাহকে হাজির নাজির করে বলি, আমি কখনো কর্তব্যে অবহেলা করিনি, এই শহরের মানুষের জন্য। আজ এই কঠিন সময়ে যদি এই শহরের মানুষ আমার পাশে দাঁড়ায়, এই দেশের মানুষ পাশে দাঁড়ায় তাহলে আগামী পাঁচ বছর ইনশাল্লাহ আপনাদের পাশে থাকবো"। ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে�� ভোটগ্রহণ ইভিএমে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকনের ইশতেহার ডেঙ্গু জ্বর: ব্যর্থতা থেকে কী শিক্ষা নিচ্ছে সংশ্লিষ্টরা? ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায় মানতে রাজি না সরকার ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়নের জন্য ফরম সংগ্রহ করে অশ্রুসজল চোখে সাঈদ খোকন বলেছেন তার রাজনৈতিক জীবনের কঠিন সময় যাচ্ছে এখন। +text: ঢাকার ওসমানী উদ্যানে রাগ কমানোর পার্ক তৈরির কাজ চলতি বছরের মধ্যেই শেষ হবে, বলছে কর্তৃপক্ষ ওসমানী উদ্যানে এই পার্কের নির্মাণ কাজ এরমধ্যে উদ্বোধনও হয়ে গেছে। পার্কের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলেছেন, 'নাগরিকদের মধ্যে অনেক সময় মান অভিমান, গোস্বা হয়ে থাকে। এই পার্কে যখন মানুষ আসবে স্বাভাবিকভাবে তাদের ভালো লাগবে, উৎফুল্ল লাগবে।" কিভাবে এই পার্ক মানুষের রাগ কমিয়ে দেবে? সে প্রসঙ্গে মেয়র খোকনের বক্তব্য, "এখানে জলের আধার আছে, চা, কফি, স্যান্ডউইচ খাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। সেই থাকবে হারানো দিনের গান শোনার ব্যবস্থা। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এখানে এলে মানুষের গোস্বা নিবারণ হয়ে যাবে। এই চিন্তা থেকেই এটি গোসা নিবারণী পার্ক"। চলতি বছরের মধ্যে পার্ক তৈরির কাজ শেষ হওয়ার সম্ভাবনার কথা বলছে নগর কর্তৃপক্ষ। ঢাকা দক্ষিণের মেয়র জানান, এর নির্মাণ কাজ শেষ হতে সময় লাগবে ৯/১০ মাসের মত। 'জল সবুজের ঢাকা' প্রকল্পের আওতায় ওসমানী উদ্যানে ২৯ একর জায়গার ওপর প্রায় ৫৮ কোটি টাকা খরচ করে এই পার্ক নির্মাণ করা হবে। পার্কটিতে মিউজিক সিস্টেম, বসার জন্য আলাদা আলাদা জোন, বাচ্চাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা, বড় স্ক্রিনে টেলিভিশন দেখার সুবিধাও রাখার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। এছাড়া পুরো পার্কটির চারদিক উন্মুক্ত রাখার চিন্তাও রয়েছে, জানায় নগর কর্তৃপক্ষ। আরও পড়ুন 'আমার স্ত্রী এখন আর গোসলই করেনা' ‘যখন বুঝতে পারলাম আমার বিয়ে হয়েছে এক নপুংসকের সঙ্গে’ আইপিএল নিলামের বিস্ময় কে এই নেপালি তরুণ? খালেদা মামলার রায়কে ঘিরে কেন এত শঙ্কা-বিতর্ক? ঢাকার বাসিন্দাদের রাগ কমানোর জন্য অভিনব এক উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে এসেছে নগর কর্তৃপক্ষ। শহরের মানুষদের একঘেয়েমি ও অবসাদ নিরসনে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ একটি পার্ক তৈরি করা হচ্ছে। যার নাম দেয়া হয়েছে 'গোস্বা নিবারণী পার্ক'। +text: পুজা করছেন কবিরাগ পোদ্দার। এক হাতে নাগাড়ে ঘণ্টা বাজিয়ে চলেছেন, অন্য হাতে একে একে উঠে আসছে ধূপ-কাঠি, প্রদীপ, জলশঙ্খ, চামর - এসব। একদিকে বাজছে ঢাক, ঘরের ভেতরে কেউ উলুধ্বনি দিচ্ছেন, কেউ বাজাচ্ছেন শাঁখ। পুরোহিতের পরনে ধুতি, গায়ে উত্তরীয় - যেরকমটা সব পুজার পুরোহিতরাই পড়ে থাকেন। তার নাম কবিরাগ পোদ্দার। আরতি শুরু করার কিছুক্ষণ আগে তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "আমি ছোট থেকে কোনোদিন মেয়েদের পোশাক পড়ি নি। জন্মেছিলাম যদিও নারী হিসাবেই। কেতকী নাম ছিল আমার। তবে সেটা মূলত খাতায়-কলমেই।" "ইউনিভার্সিটিতেও আমাকে কেউ কেতকী নামে চিনত না। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার ডাক নাম ছিল কিষাই - অর্থাৎ, কৃষ্ণ প্লাস রাই। ভাগবতেই তো লেখা আছে, গোবিন্দের বাম অংশ থেকে রাধারানীর উৎপত্তি - তাই কৃষ্ণ আর রাই তো একই - আমার মতোই। আর এখানেও কী আশ্চর্য, আমি প্রথমবার দুর্গাপুজা করছি যে বিগ্রহে, তিনিও অর্ধনারীশ্বর।" কবিরাগ একজন রূপান্তরী-পুরুষ - যিনি নারী থেকে পুরুষ হয়ে উঠেছেন। তিনিই প্রথম রূপান্তরী পুরোহিতও বটে। রঞ্জিতা সিনহার বাড়িতে অর্ধনারীশ্বরের পুজো হচ্ছে - অর্দ্ধেক শিব, অর্দ্ধেক দুর্গার মুখাবয়ব। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বেশ কিছুদিন আগেই সে দেশের সমকামী আর রূপান্তরকামী নারী-পুরুষসহ তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে। যদিও সমাজ কতটা তা মন থেকে মেনে নিয়েছে, তা বলা কঠিন। আর ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তো তাঁরা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই এখনও ব্রাত্যই। সেই সমাজ-চলতি ধর্মীয় রীতিনীতিকে একরকম চ্যালেঞ্জই করে বসেছেন কবিরাগ। হিন্দুধর্মে, যেখানে ব্রাহ্মণদেরই পুজা করার অধিকার সমাজ স্বীকৃত, সেই ছক ভেঙ্গে দিয়ে নারী থেকে পুরুষে রূপান্তরিত হওয়া কবিরাগ দুর্গাপুজা করছেন। তিনি নিজে বৈষ্ণব পরিবারের সন্তান, আবার আরাধনা করছেন শক্তির। এই পুজার নিয়মকানুন সবই তাঁকে নানা শাস্ত্র ঘেঁটে থেকে গবেষণা করে বার করতে হয়েছে। দুটি বিষয়ে এম এ পাশ করে এখন তৃতীয় এমএ করার প্রস্তুতির সঙ্গেই কবিরাগ চালিয়েছেন দুর্গাপুজা নিয়ে এই গবেষণা। "কনসেপ্টগুলো মাথায় ছিলই, কিন্তু কিছুটা তো পড়াশোনা করতে হয়েইছে। এক্ষেত্রে আমার গুরুকুলের কাছ থেকে যেমন সাহায্য পেয়েছি, তেমনই ব্রহ্মসংহিতার থেকে অনেক সাহায্য পেয়েছি। ওটাই আমাদের বৈষ্ণবদের আকর গ্রন্থ - সব পুজা-অর্চনার নিয়ম ব্রহ্মসংহিতাতেই লিপিবদ্ধ করে গে��েন জীব গোস্বামী।" "আমার গুরুকুলের কাছে যখন দুর্গাপুজা করার অনুমতি চেয়েছিলাম, তাঁরা একটাই কথা বলেছিলেন, আমি নিজে প্রস্তুত কী না এই গুরুদায়িত্ব পালন করতে!" আরতি করছেন পুরোহিত কবিরাগ পোদ্দার। আরো পড়তে পারেন: মারা গেছেন আইয়ুব বাচ্চু: শনিবার চট্টগ্রামে দাফন দুর্গা পূজা যেভাবে হিন্দুদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব হলো নোকিয়া ফোনের শহর ওউলু-র ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প ওই পুজাটা যে বাড়িতে হচ্ছে, সেই বাড়ির মেয়ে অনুরাধা সরকার। আরেক রূপান্তরী নারী। আরতির সময়ে শাঁখ বাজানো থেকে শুরু করে পুজার অন্যান্য উপচার এগিয়ে দিয়ে কবিরাগকে সাহায্য করছিলেন তিনি। "এতদিন দেখে এসেছি ব্রাহ্মণরাই পুজা করেন। কিন্তু এমন অনেক রূপান্তরকামী নারী বা পুরুষ আছেন, যারা ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও পুজার আনন্দ থেকে দূরেই থাকতেন। নিজেরা পুজা করা তো দূরের কথা। এই পুজা দেখিয়ে দিল যে ব্রাহ্মণ ছাড়াও মায়ের বোধন হয় - নিয়ম নিষ্ঠার সঙ্গেই পুজা করা যায়। মনের ভক্তিটাই যথেষ্ট পুজার জন্য।" পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ট্র্যান্সজেন্ডার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের সদস্য ও রূপান্তরকামীদের অন্যতম সক্রিয় সংগঠক রঞ্জিতা সিনহার বাড়িতেই এই দুর্গাপুজাটা হয়। তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলাম, আইন স্বীকৃতি দিলেও সমাজ বা ধর্মীয় নেতারা কী এই ছক-ভাঙ্গা দুর্গাপুজা মেনে নেবে? পশ্চিমবঙ্গ ট্র্যান্সজেন্ডার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের সদস্য রঞ্জিতা সিনহা। "সমাজ কতটা মেনে নেবে, সেটা জানি না। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ তো সবসময়েই নারীদের ওপরে শোষণ চালিয়েছে, এখন হয়ত ফর্মটা পাল্টেছে। সতীদাহের বদলে এখন অ্যাসিড ছোঁড়া হয়। নারীরাই যেখানে অত্যাচারের শিকার, সেখানে নারীসুলভ পুরুষ বা পুরুষ-সুলভ নারীদের তো কোনও অস্তিত্বই নেই সমাজের হায়ারার্কিতে।" "অথচ, একটা সময় ছিল, যখন আমাদের মতো এই তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের কিন্তু অস্তিত্ব সমাজ-স্বীকৃতই ছিল। পুরাণেই কিন্তু হর-পার্বতী বা বৃহন্নলা অথবা অর্ধনারীশ্বর - এদের ব্যাপারে লেখা আছে। আমরা এই পুজাতে সেই প্রাচীন সমাজ-স্বীকৃত ভাবনাগুলোই ফিরিয়ে আনতে চেয়েছি," বলছিলেন রঞ্জিতা সিনহা। পুজার পুরোহিত কবিরাগ বলছিলেন, দুর্গাপুজা করতে গিয়ে যেমন বারে বারেই ছক ভাঙ্গতে হয়েছে তাঁকে, তেমনই তিনি নিজের জীবনেও ছক ভেঙ্গেছেন, বারে বারেই। "বাবার খুব ঘনিষ্ঠ ছিলাম - কিছুদিন আগে পর্যন্তও। কিন্তু যখন বাবাকে বলেছিলাম আমার নতুন আইডেন্টিটির কথা, তখন বাবা বলেছিল, এই যে এত পড়াশোনা করালো, সে সবই বৃথা যাবে, কারণ আমি এই নতুন আইডেন্টিটি নিয়ে জীবনে কিছুই করতে পারব না।" "বাবা তারপর থেকে আর কথা বলে না আমার সঙ্গে - গত আট মাস। মা আমার সঙ্গে কথা বলে, তবে অন্য ব্যাপারটায় নীরব থাকে, যদিও বুঝি মায়ের সমর্থন আছে কোথাও। দাদা, বৌদিরাও নীরবেই সমর্থন করে। কিন্তু আমি চাই নি আমার আইডেন্টিটি স্যাক্রিফাইস করতে। তাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছি আমি," বলছিলেন কবিরাগ। কেতকী থেকে বছর-খানেক আগে কবিরাগ হয়ে গিয়ে এবছর প্রথম দুর্গাপুজার পুরোহিতের আসনে বসার এই একটানা লড়াইতে তিনি শুধু সঙ্গে পেয়েছেন সহযোদ্ধা রূপান্তরকামীদের। দক্ষিণ কলকাতার একটি বাড়ির পুজায় দুর্গাপুজার এক সন্ধ্যায় আরতি করছিলেন পুরোহিত। +text: বাজার থেকে ৫২ টি পণ্য সরিয়ে নিতে বলেছে হাইকোর্ট ১২ই মে ঐ ৫২ ভোগ্যপণ্য অবিলম্বে বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার আদেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। ৫২টি পণ্যের মধ্যে বহুল বিক্রিত কয়েকটি ব্রান্ডের লবন, মসলা এবং তেলও রয়েছে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যদি এসব পণ্য বাজার থেকে সরিয়ে নেয়া না হয়, তাহলে কী শাস্তির বিধান রয়েছে? এ মাসের দুই তারিখে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ বিএসটিআই এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যেখানে বলা হয় রমজানকে সামনে রেখে বিএসটিআই বাজার থেকে ৪০৬টি খাদ্যপণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে। এর মধ্যে ৩১৩টি পণ্য পরীক্ষার পরে সংস্থাটি দেখেছে এর ৫২টি পণ্যই নিম্নমানের। এর পর সংবাদ মাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হবার পর সাধারণ ভোক্তাদের মধ্যে উদ্বেগ ও শংকা তৈরি হয়। এর মধ্যে যারা সুপার শপে বাজার করেন এবং যারা সাধারণ বাজার থেকে পণ্য কেনেন উভয়েই রয়েছেন । নিয়মিত বাজার করতে যাওয়া নাজিয়া পারভিন বলছেন, "আমাদের চিন্তা করতে হয় কোনটির মেয়াদ আছে বা নেই, এখন এটাও মাথায় রাখতে হবে কোনটি মানসম্মত আর কোনটি নিম্ন মানের। এটা কি সম্ভব এই ৫২ পণ্যের তালিকা মনে রাখা?" তানিয়া ফেরদেসি বলেছেন, "সুপারশপে না হয় তবু একজন কাউকে ধরা যায় কৈফিয়ত দেবার জন্য। কিন্তু আমরা যারা নিউমার্কেট বা হাতিরপুল থেকে বাজার করি, আমরা কাকে ধরবো। দোকানদার তো বলে দেয় যে এটা কোম্পানি দিয়েছে!" এসব পণ্য বাজার থেকে সরাতে কী পদক্ষেপ নেয়া হবে? বাংলাদেশে বিএসটিআই এর পরীক্ষায় নিম্নমানের বলে প্রমানিত ৫২টি ভোগ্যপণ্য ৪৮ ঘন্টার মধ্যে বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য আজ সংবাদপত্রগুলোতে একটি নোটিশ দিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এর আগে ১২ই মে ঐসব ভোগ্যপণ্য অবিলম্বে বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার আদেশ দিয়ে হাইকোর্ট ১০ দিন সময় বেধে দিয়েছিল। সেই সঙ্গে এসব খাদ্যপণ্য বিক্রি ও সরবরাহে জড়িতদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই প্রেক্ষাপটেই আজকের নোটিশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ শফিকুল ইসলাম লস্কর। নিম্নমানের পণ্য বাজার থেকে তুলে না নিলে অভিযান চালাবে কর্তৃপক্ষ "আগামীকাল এই সময়সীমা শেষ হবে, এরপর আমরা এগুলো বন্ধে অভিযান শুরু করবো। সনাক্ত করে বাজেয়াপ্ত ও ধ্বংস করার ব্যবস্থা করবো আমরা। ইতিমধ্যেই অনেকে আইন মেনে পণ্য প্রত্যাহার করেছেন, যেমন ওয়েল ফুড।" এই ৫২ পণ্যের উৎপাদন, বিতরণ ও বিপননের সঙ্গে যারা যুক্ত রয়েছেন তাদের মধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যেই নিজেদের পণ্য বাজার থেকে সরিয়ে নিয়েছে বলে দাবি করেছে। তবে এখনো কোন কোন প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে ঢাকার বাইরের বাজার থেকে নিজেদের পণ্য সরিয়ে নেয়নি বলে অভিযোগ শোনা গেছে। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো কী বলছে? বিএসটিআই এর নিম্নমানের পণ্যের তালিকায় এইসিআই গ্রুপের দুইটি পণ্য রয়েছে---এসিআইয়ের আয়োডিনযুক্ত লবণ এবং এসিআই পিওর ব্র্যান্ডের ধনিয়া গুড়া। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে ইতিমধ্যেই নিজেদের পণ্য সরিয়ে নেবার ব্যবস্থা করেছে তারা। এসিআই কনস্যুমারস ব্রান্ডের একজন পরিচালক কামরুল হাসান বলেন,"আমাদের লবনের একটি ব্যাচে সমস্যা ছিল, সেটা আমরা প্রত্যাহার করে নিয়েছি। এক ব্যাচে সাধারণ এক লাখ কেজি পন্য থাকে, এটা ফেব্রুয়ারি মাসের লবন ছিল। লবন খুব 'ফাষ্ট মুভিং' পণ্য, বেশির ভাগ বিক্রি হয়ে গেছে, আমরা বাজারে খুব অল্পই পেয়েছি, যা পেয়েছি তুলে নিয়েছি। আর মসলা আমাদের খুবই কম বিক্রি হয়, সেটাও কমই ছিল।" পণ্য সরিয়ে না নিলে কী শাস্তি হতে পারে? কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো যদি যথাসময়ে নিজেদের পণ্য সরিয়ে নি���ে ব্যর্থ হয়, তাহলে পাইকারী ও খুচরা বাজার থেকে সেসব পণ্য ধ্বংস করার জন্য অভিযান চালানোর কথা বলছে বিএসটিআই, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু খাদ্যপণ্যের মান যথাযথ না হলে কিংবা তাতে ভেজাল থাকলে কী শাস্তি হতে পারে কোন উৎপাদকের? জনস্বার্থে মামলা লড়েন সুপ্রীম কোর্টের এমন একজন আইনজীবি অমিত দাসগুপ্ত এসম্পর্কে বলেন, "বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্য আইন আছে ২০১৩ সালের। এর অধীনে খাবারের মান নিম্ন হলে কিংবা খাদ্যে ভেজাল থাকলে, তার জন্য শাস্তির বিধান আছে। ভেজালের জন্য ধরণ অনুযায়ী তিন থেকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ ছয় লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।" "এছাড়া যথাসময়ে এখনকার হাইকোর্টের নির্দেশণা না মানলে যে আইনানুগ ব্যভস্থার কথা বলা হয়েছে তার এসব আইনের অধীনেই হবে। এছাড়া বিশেষ ক্ষমতা আইনেও খাদ্যে ভেজালের শাস্তি হতে পারে, সেখানে মৃত্যুদণ্ডের কথা বলা হয়েছে।" বাংলাদেশে পণ্যের মান নিয়ে ভোক্তাদের উদ্বেগের শেষ নেই। বিভিন্ন সময় সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ভেজাল-বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। কিন্তু এরপরেও পরিস্থিতির তেমন পরিবর্তন হয়নি বলে অনেক সময়ই ক্রেতাদের অভিযোগ করতে শোনা যায়। বাংলাদেশে বিএসটিআই এর পরীক্ষায় নিম্নমানের বলে প্রমানিত ৫২টি ভোগ্যপণ্য ৪৮ ঘন্টার মধ্যে বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য আজ সংবাদপত্রে একটি নোটিশ দিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। +text: . পুলিশের কাছ থেকে বুঝে পেয়ে মৃতদেহগুলো পাবনার গ্রামে নিয়ে যাওয়ার পথে দুইজন অভিভাবকের সাথে টেলিফোনে কথা হয় বিবিসির। কেন তাদের সন্তানরা ঢাকায় কাজ করতে এসে এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হলো তা নিয়ে তাদের কণ্ঠে বিভ্রান্তি ছিল স্পষ্ট। নিহত সবুজের বাবা খাইরুল ইসলাম জানান, নিহত সবুজ, ফারুক হোসেন এবং জহিরুল - এরা তিনজনই সম্পর্কীয় ভাই, এবং তিনজনই ঢাকার কাছে তারা একটি বেকারিতে কাজ করতেন। থাকতেনও একসাথে। "তিনজনের লাশ আজ গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছি," গভীর শোক এবং আক্ষেপের সাথে বলেন খাইরুল ইসলাম। তিনি জানান, লিটন নামে তার ছেলের আরেক খালাতো ভাই এখনও নিখোঁজ, এবং তিনি যেন ধরেই নিচ্ছেন সেও আর বেঁচে নেই। আরও পড়ুন: খাসোগজিকে খুন করা হয়েছে, নতুন সৌদি স্বীকার���ক্তি মন্দির অবমাননার জন্য মুসলিম নারীকে মুরতাদ ঘোষণা কীভাবে তাদের সন্তানদের এমন মৃত্যু হলো? এই প্রশ্নে দুই অভিভাবক দু'রকম কথা বলেন। নিহত ফারুক হোসেনের সৎ বাবা জামাল ফকির বলেন, একজন আত্মীয় মারফত তিনি শুনেছেন ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে বাসা থেকে এদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পুলিশের কাছে সে কথা তিনি বলেছেন কিনা- এই প্রশ্নে জামাল ফকির বলেন, আড়াইহাজার থানায় সে কথা তিনি বলেছেন। কিন্তু এসব কথার মধ্যেই জামাল ফকিরের হাত থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে নিহত সবুজের বাবা খাইরুল ইসলাম বলেন, তার বিশ্বাস পারিবারিক শত্রুতার জের ধরে তাদেরই এলাকার কিছু লোক তাদের সন্তানদের হত্যা করেছে। "আমার ব্যাটাকে মারছে আমার দেশের লোক...প্রশাসন মারলে মাথা ফাটিয়ে মারেনা, তারা গুলি করে। তাছাড়া, আমার ছেলে কোনো অপরাধের সাথে জড়িত ছিলনা, কোনো মামলা ছিলনা।" নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন বিবিসিকে বলেছেন, নিহত চারজনেরই মাথায় মারাত্মক জখম ছিল। "দুজনের মাথার মগজ পর্যন্ত বেরিয়ে ছিল।" তিনি জানান, ঘটনাস্থলে দুটি পিস্তল এবং এক রাউন্ড গুলি পাওযা গেছে। "কিন্তু গুলিতে নাকি অন্য কোনোভাবে তাদের হত্যা করা হয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পরই তা জানা যাবে।। ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে দু'একজন অভিভাবকের বক্তব্যের প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মি মামুন বলেন, এরকম কোন অভিযোগ তারা পাননি। তিনি বলেন, পরিবার অভিযোগ করলে অবশ্যই তা তদন্তের আওতায় আসবে। ঐ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিকভাবে তাদের সন্দেহ যে ডাকাত বা সন্ত্রাসীদের কোন্দলে ঐ হত্যাকাণ্ড হয়ে থাকতে পারে। বাংলাদেশে ঢাকার কাছে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে মহাসড়কের পাশে পড়ে থাকা অবস্থায় পাওয়া চারটি মৃতদেহ সোমবার সনাক্ত করার পর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। +text: কাতালান নেতা পুজডেমন স্পেনের সরকার ইতিমধ্যেই কাতালান আঞ্চলিক সরকার ভেঙে দিয়ে পুজডেমননকে তার পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তার পরও তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন বলে বলেছেন স্পেনের এক কর্মকর্তা। অন্যদিকে মি. পুজডেমন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ডাক দিয়েছেন গণতান্ত্রিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার। মাদ্রিদে কাতালান স্বাধীনতার বিপক্ষে সমাবেশ করেছে স্প্যানিশ জনগণ। কাতালোনিয়ার স্বাধীনতাকামী ���েতা পুজডেমনকে কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষিত নির্বাচনে অংশ নেবার সুযোগ দিতে চায় স্পেন সরকার। যদিও স্বাধীনতার ঘোষণা দেবার দায়ে তাকে আঞ্চলিক সরকার থেকে সরিয়ে দিয়ে কাতালোনিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে মাদ্রিদ। ক্ষমতায় আনা হয়েছে দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী সোরাইয়া সান্তামারিয়াকে। বার্সেলোনায় বিক্ষোভ। বামের জন ঐক্যের পক্ষে, ডানের জন্য স্বাধীনতার পক্ষে আগে থেকে ধারণ করা পুজডেমন এক টেলিভিশন ভাষণে দেশটির স্বাধীনতা ঘোষণার পর থেকে উত্তেজনা আরও বাড়তে থাকে। ভাষণটি কাতালান টিভিতে শনিবার বিকেলে প্রচার করা হয়। গণতান্ত্রিক প্রতিরোধের ডাক দেন সেখানে মিস্টার পুজডেমন। এর আগেই শুক্রবার স্পেনের প্রধানমন্ত্রী ম্যারিয়ানো রাখয় বরখাস্ত করেন পুজডেমনকে। ঘোষণা দেন ডিসেম্বরের মধ্যেই নতুন নির্বাচনের। কাতালান পুলিশ প্রধানকে সরিয়ে সেই দায়িত্ব দেয়া হয় দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে। শনিবারের টেলিভিশন ভাষণে কেন্দ্রীয় সরকারের এমন সিদ্ধান্তে বিরোধীতা করে কার্লোস পুজডেমন বলেন যে, তারা কাতালানবাসীর স্বাধীন হবার ইচ্ছার ওপর ভরসা করে এই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। সহিংসতা, অসম্মান ছাড়াই বিজয়ী হবার আশা জানান তিনি। এদিকে, মাদ্রিদ সরকারের পক্ষ থেকে ডিসেম্বরের নির্বাচনে পুজডেমনকে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানানোর কথা বলা হয়েছে। যদিও এও বলা হয়েছে যে বিচ্ছিন্নতাবাদের জন্যে তার বিচার হবে। শনিবার মাদ্রিদে বিচ্ছিন্নতাবাদের বিপক্ষে সংবিধান ঠিক রাখার দাবিতে বিশাল সমাবেশে অংশ নেন শত শত স্প্যানিশ। আরো পড়ুন: চিয়ারলিডাররা কি সবাই নারী? ত্রাণ ছাড়াও খালেদার সফরের পেছনে 'নির্বাচনী ভাবনা' স্পেনের কাতালোনিয়া অঞ্চলের স্বাধীনতা ঘোষণাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বাড়ছেই। +text: কর্তারপুরে চলছে শেষ মুহুর্তের তোড়জোড় ভারত সরকারের বক্তব্য, এই চার্জ গরিব তীর্থযাত্রীদের প্রতি একটা অন্যায় এবং এখানে পাকিস্তান কোনও 'নমনীয়তা' দেখাতে রাজি হচ্ছে না। পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গতকালই এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে এই ফি-কে প্রকারান্তরে সমর্থন করেছেন। তিনি বলেছেন, এতে স্থানীয় অর্থনীতি চাঙ্গা হবে এবং সে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ও বাড়বে। কিন্তু ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরসিমরত কাউর পাল্টা অভিযোগ করেছেন, পাকিস্তান এর মাধ্যমে গরিব মানুষের 'ধর্মবিশ্বাস নিয়ে ব্যবসা ফাঁদতে' চাইছে। ভারতের ক্যাবিনেট মন্ত্রী ও অকালি দলের নেত্রী হরসিমরত কাউর বাদল "এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কিছু হতে পারে না" বলেও মিস বাদল মন্তব্য করেন। কিন্তু বিশ ডলারের এই সার্ভিস চার্জ নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধটা ঠিক কীসের? শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গুরু নানকের শেষ জীবন কেটেছিল পাঞ্জাবের কর্তারপুরে, যা দেশভাগের পর এখন পড়েছে পাকিস্তানের নারোয়াল জেলাতে। সেই কর্তারপুরের দরবারা সাহিব গুরদোয়ারাতে যাতে ভারত থেকে শিখ তীর্থযাত্রীরা সহজে যেতে পারেন, সেই লক্ষ্যে দুই দেশ মিলে সীমান্ত পেরিয়ে একটি যাত্রাপথ স্থাপন করছে। ভারতের গুরুদাসপুরে ডেরা বাবা নানক থেকে পাকিস্তানের কর্তারপুরে দরবারা সাহিব পর্যন্ত বিস্তৃত এই পথের নামকরণ করা হয়েছে 'কর্তারপুর করিডর'। গত বছর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ঠিক পর পরই ইমরান খান এই করিডর খুলে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। তখনই তিনি জানান, "ভারত-সহ সারা দুনিয়া থেকে আসা শিখদের জন্য এই তীর্থস্থান উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে এবং সেখানে যাবতীয় সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে।" কিন্তু এখন বিতর্ক শুরু হয়েছে পাকিস্তান প্রত্যেক তীর্থযাত্রীপিছু কুড়ি ডলার চার্জ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায়। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বহু রূপ কাশ্মীর: সর্বনাশের ঝুঁকি, তবুও বাকি বিশ্বের অনীহা ইমরান খান কি নতুন পাকিস্তানের দিশারি? কর্তারপুর শিখদের জন্য খুলে দেওয়ার কথা ঘোষণা করছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সার্কভুক্ত দেশের নাগরিকরা এক অন্যের দেশে গেলে সাধারণত কোনও ভিসা ফি নেওয়া হয় না। কিন্তু এখানে পাকিস্তান ভারতীয় নাগরিকদের এই ফি থেকে রেহাই দিতে রাজি হচ্ছে না। ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও অকালি দলের নেত্রী হরসিমরত কাউর বাদল এদিন বলেছেন, "কুড়ি ডলার মানে ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় দেড় হাজার রুপি!" "তার মানে একজন গরিব মানুষ তার স্ত্রী বা বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে তীর্থ দর্শন করাতে গেলেও ছ'হাজার রুপি মতো বাড়তি খরচ!" "এতো টাকা তারা কোথায় পাবেন? আর এই টাকা দিয়ে অর্থনীতির উন্নয়ন?" "পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী তো আমাদের ধর্মবিশ্বাস নিয়ে ধান্দা করতে চাইছেন", মন্তব্য করেছেন তিনি। কর্তারপুর করিডর নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনায় ভারতীয��� দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা এসসিএল দাস। তিনিও বিবিসিকে বলেছেন, "এই ফি চার্জ করাটা তীর্থযাত্রার চেতনার পরিপন্থী এবং অত্যন্ত কুরুচিকর।" কর্তারপুর আলোচনায় অংশ নেওয়া পাকিস্তানের প্রতিনিধিদল তবে ইমরান খান নিজে তার ফেসবুক পোস্টে যুক্তি দিয়েছেন, ধর্মীয় পর্যটন তার দেশে ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে - আর এর মাধ্যমে নানা খাতেই কর্মসংস্থানও সম্ভব। বিভিন্ন দেশের বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরাও এসে এর আগে পাকিস্তানে বিভিন্ন বৌদ্ধ তীর্থস্থানে ঘুরে গেছেন, নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। তার মাধ্যমে যে সে দেশের অর্থনীতি উপকৃত হয়েছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী সেটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন। কর্তারপুর আলোচনায় পাকিস্তানের দিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ড: মহম্মদ ফয়সল। দীপক মিত্তাল (বাঁয়ে) ও এসসিএল দাস - ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে থাকা দুই কর্মকর্তা তিনি মাসতিনেক আগেই শায়েরি করে বলেছিলেন, "ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে আবহাওয়া বদলাচ্ছে - তবে গাছের ডালে এখনও নতুন পাতা আসতে কিছুটা বাকি আছে।" তিনি তখন আরও দাবি করেছিলেন, 'আশি শতাংশ বিষয় নিয়েই' দুপক্ষের মধ্যে নাকি সমঝোতা হয়ে গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা গেল তিন মাস পরেও গাছের ডালে নতুন পাতা আর এল না - অর্থাৎ বাকি মতবিরোধ দুই দেশ আজও মেটাতে পারল না। এরই মধ্যে পাকিস্তান একতরফাভাবে ঘোষণা করে দিয়েছে, আগামী ৯ নভেম্বর এই করিডরের উদ্বোধন করা হবে - আর বিশ ডলারের চার্জও জারি হবে। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: 'এসপি সাহেব বললেন, স্যার আমাদের বাঁচান' ভোলার ঘটনায় মামলা, হাজার হাজার আসামী ধর্ম অবমাননার গুজব তুলে হামলা, কৌশল একই ভোলায় বিজিবি মোতায়েন, ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম পাকিস্তানের ভেতরে অবস্থিত শিখ ধর্মাবলম্বীদের একটি পবিত্র তীর্থস্থান দর্শনের জন্য ইসলামাবাদ মাথাপিছু কুড়ি মার্কিন ডলার সার্ভিস চার্জ আদায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ভারত তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। +text: করোনাভাইরাসের টিকার জন্য বিপুল অর্থ ঢালছেন বিল গেটস কিন্তু এই টিকা আবিস্কারের আগেই বিপুল সংখ্যায় টিকা তৈরির জন্য সাতটি পৃথক কারখানা স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। যেখানে টিকা আবিস্কার হতেই অনেক দেরি, সেখানে এখনই কেন ���িনি সাতটি কারখানা স্থাপন করতে চাইছেন? যুক্তরাষ্ট্রের একটি জনপ্রিয় টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘দ্য ডেইলি শো‌’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি নিজেই এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। বিল গেটস তার ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে যে সাতটি কারখানা তৈরি করবেন, তার মধ্যে আসলে শেষ পর্যন্ত কাজে লাগবে একটি বা দুটি মাত্র কারখানা। বাকীগুলো এক অর্থে অপচয়। কিন্ত করোনাভাইরাস থেকে যে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ এবং অর্থনীতির যে বিপুল ক্ষতি এর ফলে এড়ানো যাবে, সে তুলনায় এটি কিছুই নয় বলে মনে করেন তিনি। বিল গেটস হচ্ছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবেরদের একজন। মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তিনি বহু বছর ধরে ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী লোক। মাইক্রোসফট থেকে অবসরে যাওয়ার পর তিনি মনোযোগ দেন জনহিতৈষী কাজে। গড়ে তোলেন তার নিজের এবং স্ত্রীর নামে ‘বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোতে কম খরচে লক্ষ লক্ষ মানুষকে নানা ধরণের রোগ প্রতিষেধক টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠান এখন বিরাট ভূমিকা রাখছে। সাতটি কারখানা কেন করতে হচ্ছে করোনাভাইরাসের টিকা আবিস্কারের মরিয়া চেষ্টা চলছে করোনাভাইরাসের জন্য এখন অন্তত ৩০টি ভিন্ন ভিন্ন টিকা নিয়ে গবেষণা চলছে। এগুলোর মধ্যে শেষ পর্যন্ত কোন টিকাটি সবচেয়ে বেশি কার্যকর এবং সফল বলে প্রমাণিত হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। একটি টিকা তৈরির পর দীর্ঘ সময় ধরে এটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে হয়। এর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কীনা, এটি কতটা নিরাপদ- তা জানতে হাজার হাজার মানুষের ওপর এটির পরীক্ষা চলে। তবে যেসব টিকা নিয়ে এখন কাজ চলছে, তার মধ্যে ৭টি টিকাকে খুবই সম্ভাবনাময় বলে মনে করা হচ্ছে। বিল গেটস মনে করছেন এই সাতটির যে কোন একটি বা দুটি টিকা হয়তো শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে কার্যকরী বলে প্রমাণিত হবে। ‘দ্য ডেইলি শো’র ট্রেভর নোয়া’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে বিল গেটস বলেন, তাদের ফাউন্ডেশন চুড়ান্তভাবে নির্বাচিত একটি বা দুটি টিকা বেছে নেবে এবং সেগুলো বিপুল সংখ্যায় তৈরি করতে শুরু করবে। টিকা আবিস্কারের আগেই কেন কারখানা তৈরি করে প্রস্তুত রাখছেন সেটা ব্যখ্যা করে তিনি বলেন, এতে করে সময় বাঁচবে, অনেক মানুষের জীবন বাঁচবে এবং বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হবে। ‍“সংক্রামক রোগের ব্যাপারে আমাদের ফাউন্ডেশনের যেহেতু খুবই গভীর অভিজ্ঞতা আছে আমরা তাই এই মহামারি নিয়ে অনেক ভেবেছি। আমরা ‌একটা টিকা তৈরির প্রচেষ্টায় অর্থ সাহায্য দিয়েছি। আমাদের এই দ্রুত আর্থিক সাহায্য এই প্রচেষ্টাকে অনেক ত্বরান্বিত করতে পারে।” শেখ হাসিনা: 'করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আপনার দায়িত্ব ঘরে থাকা' করোনাভাইরাস: সামাজিক দূরত্ব কেন ও কীভাবে বজায় রাখবেন? ব্রিটিশ যুবরাজ চার্লস করোনাভাইরাস-এ আক্রান্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতদের দাফন নিয়ে জটিলতা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে জেলখানায়, বহু দেশ বন্দী ছেড়ে দিচেছ করোনাভাইরাস: সংকট মোকাবেলায় চিকিৎসক-আইসিইউ কতোটা আছে বাংলাদেশে? বিল গেটস: 'করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অপচয় করার মতো সময় নেই‌' “যদিও আমরা সাতটি টিকার মধ্যে বড়জোর একটি বা দুটি টিকা বেছে নেব, আমরা সাতটির জন্যই কারখানা বানাতে টাকা দেব। যাতে করে আমাদের একটির পর একটি টিকা পরীক্ষা করে সময়ের অপচয় করে বলতে না হয়, কোন টিকাটি কাজ করছে, তারপর আবার সেই টিকার কারখানা বানাতে গিয়ে আরো সময় নষ্ট না হয়।” বিল গেটস বলেন, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে টিকা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা যখন চলবে তার পাশাপাশি টিকা তৈরির কারখানার কাজ যেন পাশাপাশি চলে। যে টিকাগুলো পরীক্ষায় সফল বলে প্রমানিত হবে না, সেগুলোর কারখানা আগে থেকে তৈরি করতে গিয়ে যে শত কোটি ডলারের অপচয় হবে সেটা স্বীকার করেন তিনি। কিন্তু তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের এখন যা পরিস্থিতি, যে হাজার হাজার কোটি ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি তার তুলনায় এই অপচয় কিছু নয়। তিনি বলেন, টিকা আবিস্কার হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের কারখানায় টিকা তৈরির কাজ শুরু হয়ে যেতে পারবে, এতে করে বহু মাস সময় বাঁচবে। কারণ প্রতিটি মাস এখন গুরুত্বপূর্ণ। করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবেলায় বিল গেটস এবং তাঁর স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস এরই মধ্যে দশ কোটি ডলার দানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বিল গেটসের সম্পদের হিসেব বিল গেটস এখন ৮৯ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ প্রায় নয় হাজার কোটি ডলার সম্পদের মালিক। তিনি যদি প্রতিদিন এক মিলিয়ন ডলার করে খরচ করেন, এই বিপুল সম্পদ খরচ করতে তার সময় লাগবে ২৪৫ বছর। ১৯৭৫ সালে বিল গেটস তার বন্ধুর সঙ্গে মিলে মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠা করেন। ১২ বছর পর তিনি বিশ্বের কনিষ্ঠতম শত-কোটিপতি হন। মাইক্রোসফট তাদের উইন্ডোজ-নাইনটি-ফাইভ বাজারে ছাড়ার পর বিল গেটস বিশ্বের সবচেয়��� ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হন। মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পর তিনি তার ফাউন্ডেশনের কাজে মনোযোগ দিয়েছেন। বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এ পর্যন্ত জনসেবামূলক কাজে দান করেছে ৪১ বিলিয়ন ডলার। করোনাভাইরাসের একটি টিকা আবিস্কারের জন্য বিশ্বের সেরা সব বিজ্ঞানীরা এখন নানা দেশের গবেষণাগারে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। সেই চেষ্টায় সফল হতে তাদের সময় লাগবে অনেক, বলা হচ্ছে অন্তত এক বছর হতে ১৮ মাস। +text: কিছু কিছু মানুষের দেহের জিনের আকার তাকে এমন শক্তি দেয় যা অন্যদের বেলায় দেখা যায় না। কিন্তু এমন কিছু মানুষ আছে যাদের শক্তি আমাদের কল্পনাকেও হার মানায়। কোন কোন ক্ষেত্রে তাদের এই শক্তির উৎস তাদের দেহের জীনগত পরিবর্তন। কিন্তু অন্যদের বেলায় এটা চারপাশের পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানোর শক্তি। এখানে পাঁচ ধরনের বিশেষ শক্তির কথা জানানো হচ্ছে যা শুধুমাত্র অল্প ক'জনের মধ্যে দেখা যায়। জলের নীচে পরিষ্কার দেখার ক্ষমতা আমার যখন পানির নীচে তাকাই তখন সবকিছু ঘোলা দেখতে পাই। কিন্তু মোকেন উপজাতির শিশু জলের তলায় পরিষ্কার দেখতে পায়। এরা মিয়ানমার আর থাইল্যান্ডের উপকূলের এক বেদে জাতি। এদের জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটে সমুদ্রে। সেখানে তারা মাছ এবং নানা ধরনের সামুদ্রিক প্রাণী শিকার করে। এরা জলের নীচে ভাল করে দেখার শক্তি অর্জন করেছে। জলের নীচে চোখ মেলে তাকালে সবকিছু ঘোলা দেখায়। আরো পড়তে পারেন: সংসদ নির্বাচন: প্রচারণার শুরুতেই সহিংসতায় নিহত ১ ভোটের রাজনীতিতে ইসলামপন্থীদের শক্তি কেন বাড়ছে ভারতের পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে বিজেপির বিপর্যয় মানুষের চোখ জল আর বায়ুর সংস্পর্শে এলে যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায় সেটাও মোকেন উপজাতির লোকদের দৃষ্টিশক্তির একটা বড় কারণ। বাতাসের সংস্পর্শে আসার পর আলো প্রতিসরিত হয়ে চোখের কর্নিয়াতে প্রবেশ করে। কর্নিয়ার ঘনত্ব বাতাসের চেয়ে বেশি। কিন্তু জল আর কর্নিয়ার ঘনত্ব প্রায় একই। ফলে পানির নীচে প্রতিসরিত আলোর জন্য খুব পরিষ্কার করে দেখা যায় না। অবশ্য সাঁতারের জন্য ব্যবহৃত গগলস এই সমস্যা দূর করেছে। এটি চোখ আর পানির মধ্যে একটি বাতাসের দেয়াল তৈরি করে। যার কারণে গগলস পরে পানির নীচে ভাল দেখা যায়। কারেন্ট বায়োলজি সাময়িকী ২০০৩ সালে একটি গবেষণা প্রকাশ করে তাতে বলা হয়, মোকেন উপজাতির শিশু��ের চোখ ডলফিনের মতো কাজ করে। তাদের চোখ আলোকে এমনভাবে বাঁকাতে পারে যার ফলে পানির নীচেও তারা ভালভাবে দেখতে পায়। প্রচণ্ড শীত সহ্য করার ক্ষমতা ইগলুদের জীবন যাপন অনেকের জন্যই অসম্ভব। মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা হচ্ছে ৩৬.৫ ডিগ্রি থেকে ৩৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর মাধ্যমে বোঝা যায় মানুষের শরীর কেন ঠাণ্ডার চেয়ে গরম বেশি সহ্য করতে পারে। কিন্তু উত্তর মেরুর ইনুইট জাতি কিংবা উত্তর রাশিয়ার নেটে জাতি প্রচণ্ড ঠাণ্ডা সহ্য করার শক্তি অর্জন করেছে। এটা তারা পারে কারণ তাদের শরীর আমাদের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। তাদের ত্বকের তাপমাত্রা অন্যদের চেয়ে বেশি। তাদের হজমশক্তিও অন্যদের চেয়ে বেশি। এগুলো পুরোপুরিভাবে জিনগত বৈশিষ্ট্য। আপনি যদি ইনুইট বা নেনেট না হন, তারপরও আপনি উত্তর মেরুতে গিয়ে থাকতে পারবেন। কিন্তু সেখানে দশকের পর দশক থাকার পরও শীত সহ্য করার ক্ষমতা আপনি আয়ত্ত করতে পারবেন না। অনিদ্রার পরও কাজ করার শক্তি প্রতিদিন গড়ে সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুমাতে পারলে মনে হবে আপনার যথেষ্ট বিশ্রাম হয়েছে। কিন্তু ২০১৪ সালে আমেরিকার অ্যাকাডেমি অফ স্লিপ মেডিসিন মানবদেহের এক বিশেষ ধরনের জিন আবিষ্কার করেছে যেখানে বলা হয়েছে এই জিন যাদের শরীরে রয়েছে তারা প্রতি রাতে ছয় ঘণ্টার কম ঘুমের পরও স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারবেন। ডাক্তাররা বলেন প্রতিদিন ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে। যাদের শরীরে ডিইসি-২ নামের এই বিশেষ জিন রয়েছে তারা অনেক বেশি র‍্যাপিড আই মুভমেন্ট বা রেম পর্যায়ের ঘুম ঘুমাতে পারেন। ফলে অনেক দ্রুত তাদের বিশ্রাম হয়ে যায়। ঘুমের মাত্রা কম হলে আপনার শরীর ও মনের ওপর তার খুবই বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়তে পারে। গবেষকরা বলছেন কম ঘুমিয়েও সুস্থ থাকতে পারেন এমন মানুষের হার শতকরা মাত্র এক ভাগ। হাড়ের ঘনত্ব বেশি বয়স বাড়ার একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হচ্ছে হাড় ঠুনকো হয়ে যাওয়া। অনেকের হাড়ের ঘনত্ব স্বাভাবিকেরও চেয়ে বেশি হারে কমে আসে। ফলে অস্টিওপোরোসিস হয় কিংবা হাড় ভাঙে বেশি। কিন্তু কিছু মানুষ আছেন যাদের দেহের জিনে এমন পরিবর্তন ঘটে যার ফলে তাদের হাড়ের ঘনত্ব সারা জীবন ধরে বাড়তেই থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের কায়রো-সায়েন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এর বিজ্ঞানীরা এই বিশেষ এসওএসটি জিন কিভাবে হাড় তৈরির ক্লেরোস্টিনা ��্রোটিন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তার গোপন রহস্য ভেদ করতে পেরেছেন। হাড় নরম হওয়া বার্ধক্যের স্বাভাবিক পরিনতি। এর মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতে হাড় ঠুনকো হওয়া কমানো যাবে বলে তারা আশা করছেন। কিন্তু এর অন্য দিকও রয়েছে। হাড় বেশি বাড়তে থাকলে জায়গান্টিজম রোগ হয়ে পারে, মুখের আকারে পরিবর্তন ঘটতে পারে কিংবা মানুষ বধির হয়ে যেতে পারে। পর্বতের উচ্চতায় বসবাসের ক্ষমতা অ্যান্ডেজ পর্বতে যেসব মানুষ থাকেন, যারা ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫০০০ মিটার ওপরে বসবাস করেন, তারা একে ডাকেন 'সোরোচে' নামে। যারা ভূপৃষ্ঠ থেকে অনেক ওপরে উঠেছেন তারা জানেন শরীরে সোরোচের কী প্রভাব পড়ে। আপনি মাটি থেকে যত ওপরে উঠতে থাকবেন, বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ ততই কমতে থাকবে। বংশপরম্পরায় পর্বতে বসবাসের ফলে অনেকে মাটির অনেক ওপরেও স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেন। আপনি অল্টিটিউড সিকনেসে আক্রান্ত হবেন। এর প্রভাবে আপনার মাথা ঘুরবে, দৃষ্টি ঘোলা হয়ে যাবে, রক্তের চাপ কমে আসবে এবং নিশ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট হবে। কিন্তু অ্যান্ডেজ পর্বতের কুয়েচুয়া জাতি কিংবা হিমালয়ের তিব্বতিদের ওপর গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে, বংশপরম্পরায় পর্বতে বসবাসের ফলে তাদের দেহের জিনে এমন পরিবর্তন ঘটেছে যাতে তারা মাটির অনেক ওপরেও স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেন। এদের দেহ মাপে বড় হয়, ফুসফুসের আকারও হয় বড়। ফলে তারা বেশি পরিমাণে অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারেন। তাদের এই বিশেষ জিনগত বৈশিষ্ট্য কিন্তু পর্বতে ছেড়ে মাটিতে নেমে আসার পরও বদলে যায় না। অসীম ক্ষমতাধর মানুষদের দেখা মেলে শুধু কমিকস আর সায়েন্স ফিকশনে। +text: ক্যাপিটল ভবনে দাঙ্গা-হাঙ্গামার পর স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছেন। কংগ্রেসের নিম্ন-কক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভসের স্পিকার ন্যান্সী পেলসি বলছেন, মি. ট্রাম্প যদি এই মুহূর্তে পদত্যাগ না করেন তাহলে তারা বিচারের লক্ষ্যে একটি সাংবিধানিক অনুচ্ছেদ নিয়ে কাজ শুরু করবেন। মি. ট্রাম্পের বিরুদ্ধে 'অভ্যুত্থানে উসকানি' দেয়ার অভিযোগটি হাউস ডেমোক্র্যাটরা সোমবার দায়ের করতে পারেন বলে জানা যাচ্ছে। তাদের অভিযোগ, বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উসকানিতে কংগ্রেসের ভেতরে বুধবারের দাঙ্গাহাঙ্গামার ঘটনাটি ঘটে, যার জেরে পাঁচ ব্যক্তি প্রাণ হারায়। ক্যাপিটল ভবনে অ্যব্রাহাম লিঙ্কনের এক ভাষ্কর্যের পাশে ���ুকোমুখি পুলিশ আর দাঙ্গাকারীরা। যুক্তরাষ্ট্রের ভাবী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, বিচারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কংগ্রেস। তবে তিনি "বহুদিন ধরে জানতেন যে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনের উপযুক্ত নন।" হোয়াইট হাউস বিচার করার উদ্যোগকে নাকচ করে বলেছে এটি 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' এবং এতে "আমাদের মহান দেশ আরও বিভক্ত হয়ে পড়বে।" হাউস অফ রিপ্রেজেনেটেটিভে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ১৬০ প্রতিনিধি ইতোমধ্যেই আর্টিকেল অফ ইমপিচমেন্ট অর্থাৎ সংসদীয় বিচারের আইনের খসড়াটিতে সই করেছেন। বুধবার কংগ্রেসে ব্যাপক দাঙ্গা-হাঙ্গামার মধ্যে আটক থাকা অবস্থায় ক্যালিফোর্নিয়ার কংগ্রেসম্যান টেড লিউ এবং রোড আইল্যান্ডের কংগ্রেসম্যান ডেভিড সিসিলিন ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচারে আইনের খসড়াটি লিখতে শুরু করেন। হোয়াইট হাউজের অদূরে সমর্থকদের সমাবেশে ভাষণ দিচ্ছেন ডেনাল্ড ট্রাম্প। দেখুন সম্পর্কিত খবর: উদ্যোগটি যদি সত্যিই কার্যকর হয়, তাহলে এটি হবে মি. ট্রাম্পের বিচারের জন্য হাউস অফ রেপ্রেজেনটেটিভের দ্বিতীয় দফা প্রচেষ্টা। এর আগে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং কংগ্রেসের কাজে বাধাদানের অভিযোগে সংসদের নিম্ন কক্ষে মি. ট্রাম্পের বিচার করা হয়। কিন্তু পরের বছর ফেব্রুয়ারি মাসে সংসদের উচ্চ-কক্ষ সেনেটে দুটি অভিযোগই খারিজ হয়ে যায়। মার্কিন ইতিহাসে কোন প্রেসিডেন্টই দু'বার বিচারের সম্মুখীন হননি। তবে মি. ট্রাম্পের শাস্তির সম্ভাবনা কম কারণ সেনেটে মি. ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পাটি বেশ শক্তিশালী। সিনেটে একজন নরমপন্থী রিপাবলিকান অ্যালাস্কার লিসা মারকোস্কি অ্যাঙ্কোরেজ ডেইলি নিউজ পত্রিকাকে বলছেন, মি. ট্রাম্পের "এখন উচিত হবে কেটে পড়া।" আমেরিকার কংগ্রেস ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের নজিরবিহীন হামলা নেব্রাস্কার রিপাবলিকান সিনেটার বেস স্যাসি নিয়মিতভাবে মি. ট্রাম্পের সমালোচনা করে থাকেন। তিনি বলছেন, বিচারের উদ্যোগ নেয়া হলে তিনি অবশ্যই সেটা সমর্থন করবেন। তবে মি. ট্রাম্পের শাস্তির পক্ষে তার দলের বেশিরভাগ সদস্য রয়েছেন এমন কোন প্রমাণ এখনও নেই। এর মানে হলো কংগ্রেসের দাঙ্গার জন্য সংসদের নিম্ন-কক্ষে মি. ট্রাম্পের যে কোন বিচার হলে সেটা হবে মূলত প্রতীকী। কংগ্রেসের বাইরে পুলিশকে ঘিরে ধরেছে বিক্ষোভকারীরা। সেনেটের একটি অভ্যন্���রীণ মেমো থেকে জানা যাচ্ছে, নিম্ন কক্ষ থেকে আসা কোন বিচারের সিদ্ধান্ত সেনেট ১৯শে জানুয়ারির আগে অনুমোদনের জন্য বিবেচনা করতে পারবো না। আর সেটি হবে মি. ট্রাম্পের ক্ষমতা ছাড়ার আগের দিন। এই ক্ষেত্রে ক্ষমতা ত্যাগের পরও সেনেটে মি. ট্রাম্পের বিচার চলতে পারে কিনা তা নিয়ে সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে। যদি বিচারে দোষী প্রমাণিত হন, তাহলে সাবেক প্রেসিডেন্টে হিসেবে মি. ট্রাম্প তার প্রাপ্য বেতন-ভাতাদি কছুই পাবেন না। তিনি যাতে ভবিষ্যতে কোন নির্বাচনে অংশ না নিতে পারেন, সেনেটাররা সেই প্রস্তাবও অনুমোদন করতে পারেন। কংগ্রেসের দাঙ্গার ঘটনাতে মার্কিন রাজনীতিকরা একটাই নাড়া খেয়েছেন যে তাদের অনুরোধে ডেমোক্র্যাটিক হাউস স্পিকার ন্যান্সী পেলোসি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ অধিনায়কদের সাথে কথা বলেছেন যাতে মি. ট্রাম্প পরমাণু অস্ত্রের কোড ব্যবহার করতে না পারেন। বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: মার্কিন কংগ্রেসে বুধবারের হামলায় ভূমিকা রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাট পার্টি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সংসদীয় বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করছে। +text: ১৯৯৩ সালের জুলাই মাসে সিলেটের আদালত প্রাঙ্গন থেকে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরার অভিযোগে ফজলু মিয়াকে পুলিশ আটক করে। পরে তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন দাবি করে তাকে বাংলাদেশের এক আইনে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ব হু আইনি লড়াইয়ের পর ২০০৩ সালে আদালত তাকে মুক্তির আদেশ দিলেও মুক্তি মেলেনি ফজলু মিয়ার। একটি মানবাধিকার সংস্থার সহায়তায় অবশেষে তিনি আজ সিলেটের জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। এখানেই বছরের পর বছর আটক ছিলেন ফজলু মিয়া। ২২ বছর আগে ১৯৯৩সালের ১১ই জুলাই সিলেটের আদালত এলাকায় ঘোরাফেরা করার সময় ফজলু মিয়াকে পুলিশ আটক করেছিল। প্রথমে ৫৪ ধারায় সন্দেহবশত আটক করা হলেও পরে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে সে সম্পর্কিত বিধিতে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে রাখা হয়েছিল। এক পর্যায়ে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ফজলু মিয়াকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়েছিল। গত ২২ বছরে ফজলু মিয়াকে ১৯৮বার আদালতে হাজিরা দিতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সিলেটে কারাগারের সুপার আইনী সহায়তাদানকারি বেসরকারি সংস্থা ব্লাস্ট এর সহায়তা নিয়ে ফজলু মিয়াকে মুক্ত করেন। সিলেট থেকে ব্লাস্টের আইনজীবী জ্যোৎস্না ইসলাম জানিয়েছেন, সিলেটের দক্ষিণ সুরমার তেতলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য কামাল উদ্দিন রাসেল দায়িত্ব নেয়ায় ফজলু মিয়া মুক্তি পেলেন। সুলতানা কামাল কিন্তু ১৩ বছর আগে ২০০২ সালে আদালত তাকে তার আত্নীয়-স্বজনের জিম্মায় মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিল।ফজলু মিয়ার কোন আত্নীয়-স্বজন খুজে না পাওয়ায় তাকে মুক্তি দেয়া হয়নি। জ্যোৎস্না ইসলাম উল্লেখ করেছেন, তার মক্কেল ২৭/২৮ বছর বয়সে আটক হয়েছিল। এখন ২২ বছর পর মুক্তি পেয়ে ফজলু মিয়া আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন।তবে তিনি বেশ অসুস্থ। বিনা বিচারে ফজলু মিয়ার জীবনের একটা বড় সময় যে নষ্ট হয়ে গেলো,তিনি ক্ষতিপূরণ পাবেন কিনা, এসব প্রশ্ন তুলছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সুলতানা কামাল বলছিলেন, “ফজলু মিয়ার জীবনের সেই সময়গুলো কেউ ফেরত দিতে পারবে না। তারপরও কোনভাবে তাকে যদি আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়া যেতো।কিন্তু এ ধরণের কোন উদাহরণই তৈরি হয়নি।” মানবাধিকার সংগঠনগুলো আরও বলেছে, ফজলু মিয়ার আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাওয়ার প্রশ্নে আইনগত বিষয় তারা খতিয়ে দেখবে। বিনা বিচারে ২২ বছর কারাগারে আটক এক ব্যক্তিকে বাংলাদেশের এক আদালত আজ জামিনে মুক্তি দিয়েছে। +text: হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে ওয়েবোতে নিজের এই কাহিনী বর্ণনা করেছেন চিকিৎসক লি ওয়েনলিয়াং যখন একজন চিকিৎসক এই রোগের প্রাদুর্ভাবের ব্যাপারে অন্য চিকিৎসকদের সতর্ক করে দেয়ার চেষ্টা করছিলেন, তখন পুলিশ তার সঙ্গে দেখা করে এবং এ ব্যাপারে কথা না বলার আদেশ দেয়। একমাস পরেই সেই চিকিৎসক সবার কাছে হিরো বা নায়ক হয়ে উঠেছেন। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে ওয়েবোতে তিনি তার এই কাহিনী বর্ণনা করেছেন। তার ওই পোস্টটি শুরু হয়েছে এভাবে, ''হ্যালো, আমি লি ওয়েনলিয়াং, উহান সেন্ট্রাল হাসপাতালের একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ।'' গত বছরের ডিসেম্বর মাসে এই রোগের প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রস্থলে কাজ করছিলেন চিকিৎসক লি। তখন তিনি ভাইরাসে আক্রান্ত সাতজনকে দেখতে পান। তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন, তাদের সার্স রোগ হয়েছে, যে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ২০০৩ সালে বিশ্বব্যাপী মহামারী হিসাবে দেখা দিয়েছিল। আরো পড়ুন: করোনাভাইরাস: লক্ষণ, প্রতিরোধ ও আরো দশটি তথ্য করোনাভাইরাস: 'ত্রুটি ও ঘাটতি' স্বীকার করলো চীন উহানফেরত বাংলাদেশিদের কোয়ারেন্টাইনে যেমন কাটছে চীনা নাগরিকদের তালিকা, কী করবে স্বাস্থ্য অধিদফতর তিনি ভেবেছিলেন, উহানের সামুদ্রিক খাবারের বাজার থেকে রোগটি ছড়িয়েছে। আক্রান্তদের হাসপাতালের কোরায়েন্টিনে রাখা হয়। ৩০শে ডিসেম্বর মাসে একটি চ্যাট গ্রুপের মাধ্যমে সহযোগী চিকিৎসকদের এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ব্যাপারে একটি বার্তা দেন চিকিৎসক লি। সেখানে তিনি সবাইকে সংক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য প্রতিরোধমূলক কাপড় পরার পরামর্শ দেন। অসুস্থ হওয়ার পরেও ড. লি অবাক হতেন যে, কেন চিকিৎসা কর্মীদের অসুস্থ হওয়ার ব্যাপারটি অস্বীকার করে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ তখনো ডক্টর লি জানতে না যে, তিনি যে রোগের কথা বলছেন, সেটা একেবারে নতুন একটি করোনাভাইরাস। চারদিন পরে তার সঙ্গে দেখা করেন পাবলিক সিকিউরিটি ব্যুরোর কর্মকর্তারা। তারা তাকে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করতে বলেন। সেই চিঠিতে মি. লি-র বিরুদ্ধে মিথ্যা মন্তব্য করার অভিযোগ আনা হয়। বলা হয়, এর ফলে সামাজিক ক্ষতি করা হচ্ছে। পাবলিক সিকিউরিটি ব্যুরোর কর্মকর্তারা তাকে বলেন, '' আমরা আপনাকে সতর্ক করছি। আপনি যদি একগুঁয়েমি করে এ ধরণের অবৈধ কার্যকলাপ চালিয়ে যান, তাহলে আপনাকে বিচারের আওতায় আনা হবে। আপনি কি সেটা বুঝতে পারছেন?'' এর নীচে ডক্টর লি হাতে লিখে দেন, ''হ্যাঁ, আমি বুঝতে পারছি।'' পুলিশ জানিয়েছে, তিনি হচ্ছেন আটজন ব্যক্তির একজন, যাদের বিরুদ্ধে 'গুজব ছড়ানোর' অভিযোগে তদন্ত করা হচ্ছে। জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে ওই চিঠির একটি কপি ওয়েবোতে প্রকাশ করেন ডক্টর লি এবং তার সঙ্গে কী ঘটেছে, সেগুলো বর্ণনা করেন। পুলিশ বলেছে, আমরা আশা করছি তুমি শান্ত হবে এবং নিজের আচরণ সংযত করবে। এর মধ্যেই তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, কিন্তু এই ক্ষমা প্রার্থনা এসেছে অনেক দেরি করে। জানুয়ারি মাসের প্রথম কয়েক সপ্তাহ উহানের কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলছিলেন যে, যারা আক্রান্ত কোন প্রাণীর সংস্পর্শে এসেছেন, তারাই শুধুমাত্র ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ সময় চিকিৎসকদের সতর্কতার জন্য কোন পরামর্শ বা সহায়তা দেয়া হয়নি। পুলিশের ওই সাক্ষাতের এক সপ্তাহ পরেই ডক্টর লি একজন নারীর চিকিৎসা করেন, যার গ্লুকোমা রয়েছে। তিনি জানতেন না যে, ওই নারী নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ওয়েবো পোস্টে চিকিৎসক লি বর্ণনা করেন কীভাবে তার কাশি শ���রু হয়েছিল। পরদিন তার জ্বর আসে এবং দুইদিন পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার পিতামাতাও অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাদেরকেও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এর ১০দিন পরে-২০শে জানুয়ারি- করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে চীন জরুরি অবস্থা জারি করে। চিকিৎসক লি বলছেন, তাকে বেশ কয়েকবার করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করানো হয়েছে এবং সবগুলোই নেগেটিভ হয়েছে। মি. লির বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছিল ৩০শে জানুয়ারি তিনি আরেকটি পোস্টে লিখেছেন, ''আজ নিউক্লিক অ্যাসিড পরীক্ষার ইতিবাচক ফলাফল এসেছে। অবশেষে পজিটিভ ফলাফল পাওয়া গেছে।'' সেই সঙ্গে একটি কুকুরের ইমোজি দিয়ে লেখা সংক্ষিপ্ত পোস্টে কুকুরটির জিহ্বা বেরিয়ে রয়েছে এবং চোখ দুটি ঘোরানো। তার পোস্টে প্রচুর লাইক পড়ে এবং মন্তব্য আসে। একজন ওয়েবো ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'ড. ওয়েনলিয়াং একজন হিরো।'' তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে, এই গল্পে তার দেশ সম্পর্কে কি বলা হচ্ছে। তিনি লিখেছেন, '' তার গল্প এটা বলে দেয় যে, ভবিষ্যতে কোন সংক্রমণ রোগের লক্ষণ দেখলেও প্রাথমিক সতর্কতা দিতে ভয় পাবেন চিকিৎসকরা।'' ''চীনে একটি নিরাপদ জনস্বাস্থ্য তৈরি করার জন্য লাখ লাখ লি ওয়েনলিয়াং দরকার,'' লিখেছেন ওই মন্তব্যকারী। জানুয়ারি মাসের শুরুর দিকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার খবর চেপে রাখার চেষ্টা করেছিল চীনের উহান শহরের কর্তৃপক্ষ। +text: মহাশূন্য থেকে সাগরে প্লাস্টিক বর্জ্য খুঁজে বের করার কৌশল বের করতে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা বিশেষ করে বর্জ্য বা ধ্বংসপ্রাপ্ত টুকরোগুলো ন্যূনতম বস্তুর আকারের তুলনায়ও ছোট, তখন তা উপগ্রহের মাধ্যমে খুঁজে বের করা খুবই চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু পদ্ধতিটি কাজ করে প্লাস্টিক থেকে পানিতে প্রতিফলিত আলোর সূত্র সন্ধান করে। যুক্তরাজ্যের প্লাইমাউথ মেরিন ল্যাবরেটরিতে এ সংক্রান্ত পরীক্ষার ফল খু্বই আশাব্যঞ্জক। "আপনি সমুদ্রে ভাসমান একটি পৃথক প্লাস্টিকের বোতল হয়তো দেখতে পারবেন না, কিন্তু আমরা এই উপাদানের একত্রিতকরণকে শনাক্ত করতে পারি," বিবিসিকে একথা বলেছেন ড. লরেন বিয়ারম্যান। ২০১৫ এবং ২০১৭ সালে ইইউ'এর সেনটিল-টু উপগ্রহের কক্ষপথে স্থাপন করা হয় মাল্টি স্পেকট্রাল ইন্সট্রুমেন্টস বা এসএসআই নামের দুটি যন্ত্র। এটি পরিচালনা করছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি, আর এ দিয়ে কাজ করছেন পৃথিবী পর্যবেক্ষণরত বিজ্ঞানীরা। এই মিশনের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল ভূ-পৃষ্ঠের একটি ক্রমবর্ধমান মানচিত্র তৈরি করা। তবে এই প্রক্রিয়া উপকূলীয় অংশের জলের দৃশ্যও ধারণ করতে পারে। আর এটিই মহাসাগরে প্লাস্টিক বর্জ্য শনাক্ত করার একটি সুযোগ। কেননা প্রতি বছরে অন্তত আট মিলিয়ন টন প্লাস্টিক নদী কিংবা অন্যসব উৎসের মাধ্যমে সমুদ্রে আসছে। এই দুই সেনটিল উপগ্রহের মাধ্যমে প্রতি দুই দিন অন্তর যুক্তরাজ্যের অংশটির ম্যাপিং করবে। ড. বিয়ারম্যানের মতে, স্যাটেলাইটের ক্যামেরার রেজুলেশন ১০মিটার, এর কঠিন দিকটি হলো যে এই ক্যামেরায় শুধু সেসব বস্তুর ছবিই ধরা পড়বে যার একটি নির্দিষ্ট মাত্রার পিক্সেল তৈরি করতে পারবে। আরো পড়তে পারেন: মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তদন্তে অস্বীকৃতি প্রচলিত রীতির বিরুদ্ধে একে অপরকে রক্ষা করছেন যে নারীরা স্মার্টফোনে দীর্ঘসময় কাটানো কি ক্ষতিকর? উপরের ছবিতে সহজে প্লাস্টিক দেখা গেলেও নিচের ছবিতে তা দেখা কষ্টকর।। সাদা বাক্স দিয়ে সেন্টিনেল পিক্সেল বোঝানো হয়েছে। তবে কিছু বিষয় তার পক্ষে কাজ করেছে। একটি হলো নদীতে ভাসমান বর্জ্য বা ধ্বংসাবশেষ যেগুলো ভেসে সমুদ্রে গিয়ে পড়ে তার বেশিরভাগেই থাকে উদ্ভিদ, সেগুলোতে প্লাস্টিকের মতো আবর্জনাও থাকতে পারে। আরেকটি যে বিষয়ের সুবিধা সম্পর্কে ড. বিয়ারম্যান বলছেন তা সেন্টিনেল উপগ্রহের ডিটেক্টরের বিশেষ গুণ। ভিন্ন ভিন্ন আলোক তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বোঝার ক্ষমতা রয়েছে যন্ত্রগুলোতে। ফলে প্লাইমাউথ বিজ্ঞানীরা ক্যামেরায় তোলা চিত্রের পিক্সেল বিশ্লেষণ করতে পারবে। যেভাবে প্লাস্টিক শনাক্ত করা হবে সমুদ্রের পানি নিকটবর্তী ইনফ্রারেড রশ্মি জোরালো ভাবে শোষণ করে। উদ্ভিদ এবং জলে ভাসমান অন্যকিছু এই নিকটবর্তী ইনফ্রারেড রশ্মি প্রতিফলিত করে। তবে উদ্ভিদে প্লাস্টিক মিশে থাকলে তার কিছু পরিবর্তন দেখা যাবে। আর এই উদ্ভিদ ও প্লাস্টিকের ইনফ্রারেড প্রতিফলের ভিন্নতাই তাদের শনাক্ত করার অন্যতম উপায়, বলছেন ড. বিয়ারম্যান। তিনি বলেন, যে ভাসমান বস্তুর ছবি সংগ্রহ করে তার পিক্সেল বিশ্লেষণ করেই বলা সম্ভব তাতে উদ্ভিদ উপাদান বা প্লাস্টিক উপাদান কেমন রয়েছে। উপগ্রহ থেকে তোলা ছবির বর্ণালী বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন বস্তুর একটি সূচীও তৈরি করা হয়েছে। ব্রিটিশ কলম্বিয়ার এবং স্কটল্যান্ডের পূর্ব উপকূলে চালানো একই ধরনের পরীক্���াও আশার সঞ্চার করেছে। ড. বিয়ারম্যানের মতে, এই পদ্ধতিটির আরো পরিমার্জন প্রয়োজন তবে এই প্রাথমিক পরীক্ষার ফল আরো পরীক্ষার তাগিদ দেয়। পরবর্তী পর্যায়ে ছবিগুলো বিশ্লেষণের জন্যে অ্যালগরিদম ব্যবহার করা হবে। কেননা ধরে ধরে অনুসন্ধান সময়সাপেক্ষ ও বাস্তব সম্মত নয়। অটোমেশনই এর একমাত্র পথ। ড. বিয়ারম্যান প্লাস্টিক বর্জ্য বেশি পরিমাণে নিঃসরণ হয় এমন সব গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। আর দূষণের প্রভাব মূল্যায়ন করতে তথ্যগুলো ডেটাবেজের সাথে যুক্ত করছেন। মহাশূন্য থেকে সাগরে প্লাস্টিক বর্জ্য খুঁজে বের করার কৌশল বের করতে কাজ করছেন এখন বিজ্ঞানীরা। +text: বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় মোবাইল ফোনে ফ্রি এবং ফোর জি সেবা বন্ধ করা হয়। শনিবার দুপুর দুইটা থেকে মোবাইল ফোনে থ্রি-জি এবং ফোর-জি সেবা পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। তবে মোবাইল ফোনে টু-জি সেবা পাওয়া যাচ্ছে। রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে এবং নির্বাচনের সময় 'গুজব প্রতিরোধ' করার জন্যই এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেলে ৩১শে ডিসেম্বর রাত ১২ টার পর মোবাইল ইন্টারনেট স্বাভাবিক হয়ে আসতে পারে বলে ধারণা দিয়েছেন কর্মকর্তারা। নির্বাচনের সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরামর্শেই এ ধরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সপ্তাহ দুয়েক আগে নির্বাচন কমিশনের সাথে এক বৈঠকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তরফ থেকে ভোটের দিন মোবাইল ইন্টারনেট সেবা ফোর-জি থেকে টু-জিতে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছিল। এ ধরণের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আরো পড়ুন: বিটিআরসির কথা ফেসবুক কি আদৌ শোনে? ইন্টারনেটের গতি টু জি'তে নামালে কী ক্ষতি? কীভাবে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করছে রাজনৈতিক দলগুলো ইন্টারনেটের গতি টু জি'তে নেয়া হলে কার্যত অচল হয়ে পরবে বিভিন্ন যোগাযোগের সফটওয়্যার ও অ্যাপ এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১১ টা থেকে শুক্রবার সকাল আটটা পর্যন্ত মোবাইল ইন্টারনেটে থ্রি-জি এবং ফোর-জি বন্ধ করে শুধু টু-জি সেবা চালু রেখেছিল বিটিআরসি। থ্রি-জি এবং ফোর-জি সেবা না থাকায় মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছেন না গ্রাহকরা। কারণ, টু-জি সার্ভিস এতোটাই ধীরগতির যে তাতে ফেসবুক কিংবা টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে মোবাইল ফোন থেকে ছবি কিংবা ভিডিও আপলোড করতে পারছ��ন না। বাংলাদেশে অতীতে বিভিন্ন সময় যে কোন আন্দোলন মোকাবেলার জন্য সরকার মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট সার্ভিস বন্ধ করে দেবার নজির রয়েছে। বাংলাদেশে নির্বাচনের আগের দিন মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট থ্রি-জি এবং ফোর-জি সার্ভিস বন্ধ করে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশে টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন বা বিটিআরসি। +text: ওয়ানডে সিরিজে প্রস্তুতির এক মুহূর্তে বাংলাদেশ দল এনিয়ে ক্রিকেট বোর্ড ও ক্রিকেট ভক্তদের মধ্যে ক্ষোভ ও সমালোচনা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই বাংলাদেশ ওয়ানডে খেলছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে। ক্রিকেটের ওয়ানডে ফরম্যাটে বরাবরই ভাল করে বাংলাদেশ। আর ওয়েষ্ট ইন্ডিজ শেষবার ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে ২০১৪ সালে। সব মিলিয়ে ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর একটা সম্ভাবনা দেখছেন বিশ্লেষকরা। নাজমুল আবেদীন ফাহিম, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের একজন কোচ। তিনি বাংলাদেশের বেশ কজন সিনিয়র ক্রিকেটারেরও মেন্টর ছিলেন। বর্তমানে নারী ক্রিকেট দলের মেন্টর হিসেবে কাজ করছেন। তার মতে, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাতে বাংলাদেশ দলের কিছু কৌশল কাজে লাগাতে করতে হবে। ১. টেস্ট সিরিজের স্মৃতি মুছে ফেলা প্রয়োজন নাজমুল আবেদীন ফাহিমের মতে, দলটি টেস্ট সিরিজ নিয়ে বেশি ভেবেছে। তিনি বলেন, "এমন কিছু যে আগে ঘটেনি তা কিন্তু নয়। আমাদের আশা বেশি ছিল। এটা সত্য যে অস্ট্রেলিয়া এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দল উপমহাদেশে এসে নানাভাবে হারে। অস্ট্রেলিয়াও বাংলাদেশে এসে টেস্ট হেরেছে। সেই অস্ট্রেলিয়া দলটিও কিন্তু একদম খারাপ ছিল না। শ্রীলংকার মাটিতেই দক্ষিণ আফ্রিকা চলতি টেস্ট সিরিজে বেশ ভুগছে। ২. ওয়ানডে বাংলাদেশ ভাল বোঝে মি. ফাহিম মনে করেন, এই মুহূর্তে মোমেন্টাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের হাতে। কিন্তু বাংলাদেশের ওয়ানডেতে ফিরে আসার সুযোগ আছে কারণ এই খেলাটা বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ভাল বোঝে। বাংলাদেশের এমন কিছু ক্রিকেটার আছে যারা ওয়ানডে ফরম্যাটের সাথে ভালো মানিয়ে নিতে পারে। বাংলাদেশ শেষ ওয়ানডে খেলেছে জানুয়ারি মাসে। নতুন কোচ স্টিভ রোডসের অধীনে প্রথম ওয়ানডে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ আরো পড়তে পারেন: মিরপুরের বাড়িতে গুপ্তধন রহস্য: পুলিশের খোঁড়াখুঁড়ি পাকিস্তানের এবারের নির্বাচন সর্ম্পকে যা জানা জরুরী যে কারণে নিকারাগুয়ায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ৩. ওপেনিং জুটিটা গুরুত্বপ���র্ণ বাংলাদেশের জন্য উদ্বোধনী জুটি একটা দুশ্চিন্তার কারণ। নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, নতুন বলে খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ। এটা শুধু ওয়ানডে না, তিনটি ফরম্যাটেই এই জুটির ওপর নির্ভর করে দলের মনোভাব। নতুন বলেই মিডল অর্ডার চলে আসলে বিপদ হয়ে পরে। তামিম-সৌম্যর ওপেনিং পার্টনারশিপ ভালো ছিল, মাঝে মাঝে এমন হয়েছে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ভাল করার ফলে পুরো দল ভাল খেলেছে। "আমাদের ব্যর্থতা তামিম ইকবালের সাথে নিয়মিত ভাল করার মতো কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি," বলেন তিনি। শুরুতে শংকা থাকলেও শেষ পর্যন্ত দলের সাথে যোগ দেন মাশরাফি বিন মর্তুজা ৪. শক্তির জায়গা হওয়া উচিত স্পিন নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, পেস বোলিং-নির্ভর অ্যাটাক গড়ার সময় এখনো বাংলাদেশের হয়নি। কন্ডিশন যেমনই হোক স্পিনকে মূল শক্তি হিসেবে প্রয়োগ করা প্রয়োজন। "উপমহাদেশের বাইরের দলগুলোতে দু-একজন থাকে যারা স্পিন বলে ভাল খেলে। বাকিরা কিন্তু সেভাবে স্পিন বলে খেলতে পারে না।" সেজন্যে তিনি মনে করেন বাংলাদেশ দলের উচিত স্পিন বলের উপর গুরুত্ব দেওয়া। ৫. ছন্দে ফেরার জন্য শুরুটা গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের ছন্দটা অনুপস্থিত বলে মনে করেন এই ক্রিকেট কোচ। তিনি বলেন, একদম প্রথম স্পেলে দুটি বা তিনটি উইকেট ফেলে দিলে ক্রিকেটারদের শারীরিক ভাষায় পরিবর্তন ঘটে। এটা পুরো ম্যাচেই দলকে চাঙ্গা রাখে। আবার ব্যাটিংয়েও 'শুরুর জুটির' ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। "বাংলাদেশ শুরুটা ভাল করলে মিডল অর্ডার ও লোয়ার মিডল অর্ডার অনায়াসে একটা সংগ্রহ দাঁড় করায় কিন্তু সেটা না হলে বিপরীত ঘটনা ঘটে," বলেন তিনি। আরো পড়তে পারেন: ভারতে বন্ধ হল স্যানিটারি পণ্যের উপর 'রক্ত কর' মৃতকে জীবন দিতে পারেন বলে দাবী করেন যে ব্যক্তি বিশ্বের সবচেয়ে নিঃসঙ্গ মানুষের গল্প আজ শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ ও ওয়েষ্ট ইন্ডিজের মধ্যকার ওয়ানডে সিরিজ। টেস্ট সিরিজে দুটো ম্যাচেই হেরেছে বাংলাদেশ। +text: বালিকা বন্ধুর সঙ্গে হিটলারের হাসিখুশি ছবি কিন্তু ভালো করে তাকালে এর অন্ধকার দিকটি ধরা পড়বে। কারণ এই ব্যক্তি অ্যাডলফ হিটলার, যে ৬০ লাখ ইহুদি ধর্মাবলম্বীকে হত্যা করেছে, এই বালিকাটিও একজন ইহুদি। তা সত্ত্বেও, হয়তো রোসা বেরনিল নেইনাউয়ের সঙ্গে হিটলারের বন্ধুত্ব টিকেই থাকতো, যদি উচ্চপর্যায়ের নাৎসি কর্মকর্তারা সেখানে নাক না গলাতেন। ছবিটি তুলেছিলেন হেইনরিক হফম্যান। কিছুদিনের মধ্যে এই ছবিটি যুক্তরাষ্ট্রে নিলামে উঠতে যাচ্ছে, যার দাম ১০ হাজার ডলার হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগেও রোসা এবং হিটলারের ছবি দেখা গেলেও, হিটলারের স্বাক্ষর করা বা রোসার ফুলের ছবি আকা ছবিটি আগে দেখা যায়নি। হিটলারের প্রিয় বালিকা একই দিনে জন্মদিন হওয়ার কারণেই এই ইহুদি ছোট্ট মেয়ে আর হিটলারকে কাছাকাছি নিয়ে এসেছিল। নিলামকারী প্রতিষ্ঠানের তথ্যমতে, ১৯৩৩ সালে আলপাইন রিট্রিট বেরগফে হিটলারের বাড়ির বাইরে তার জন্মদিন উপলক্ষে আরো অনেকের সঙ্গে সমবেত হয়েছিলেন রোসা এবং তার মা ক্যারোলিন। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: গৌতম থেকে যেভাবে অনন্যা হয়ে উঠলেন তিনি প্রেসক্রিপশন ছাড়া মানুষ অ্যান্টিবায়োটিক খায় কেন? ডায়াবেটিস সম্পর্কে যেসব জানা জরুরি ইহুদি পরিচয় জানা সত্ত্বেও বেশ কয়েক বছর হিটলারের সঙ্গে রোসার বন্ধুত্ব টিকে ছিল ধারণা করা হচ্ছে, যখন হিটলার জানতে পারেন যে, রোসার জন্মদিনও তার একই দিনে, তখন তিনি রোসা এবং তার মাকে বাসায় আমন্ত্রণ জানান। সেই বাসাতেই এই ছবিটি তোলা হয়। তবে খুব তাড়াতাড়ি এটা জানা যায় যে, ক্যারোলিনের মা ছিলেন একজন ইহুদি, সুতরাং তখনকার নাৎসি কর্মকর্তাদের চোখে রোসাও একজন ইহুদি বলে মনে করা হয়। কিন্তু সেটি এই ছোট্ট মেয়েটির সঙ্গে হিটলারের বন্ধুত্বে বাধা হতে পারেনি। দুজনের তোলা একটি ছবিতে স্বাক্ষর করে রোসার কাছে পাঠিয়েছিলেন হিটলার। ছবিটি দেখে বোঝা যায়, এরপরে রোসা সেই সাদাকালো ছবিটির ওপর নানা ফুলের ছবি আঁকে। ১৯৩৫ থেকে ১৯৩৮ সালের মধ্যে অন্তত ১৭টি উপলক্ষ ধরে হিটলারের কাছে চিঠি লিখেছিল রোসা। কিন্তু নাৎসি এই নেতার ব্যক্তিগত সচিব, মার্টিন বোরম্যান একসময় আর যোগাযোগ না করার জন্য তাদের জানালে, সেই সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। আরও পড়তে পারেন: হিটলার কি আসলেই ১৯৪৫ সালে মারা গিয়েছিলেন? হিটলারের মৃত্যুর খবর যেভাবে জেনেছিল বিশ্ব ভারতে অ্যাডল্ফ হিটলার কেন ঘৃণিত নন? 'হিটলার আমার বন্ধু ছিল'- বইয়ের লেখক এবং আলোকচিত্রী হেইনরিক হফম্যান পরবর্তীতে লিখেছেন, সেই সিদ্ধান্তে খুশি ছিলেন না হিটলার। ''আমার প্রতিটি আনন্দ ভঙ্গ করে দেয়ার জন্য এখানে কিছু মানুষ আছে,'' বলে তার কাছে মন্তব্য করেছিলেন হিটলার। ১৯৫৫ সালে লেখা তার ওই বইতে রোসার সঙ্গে হিটলারের তোলা দুইটি ছবি সংযোজন করেন হেইনরিক হফম্যান, যার শ��রোনাম দিয়েছিলেন, 'হিটলারের প্রিয় বালিকা, বেরগফে যাকে দেখে তিনি আনন্দ পেতেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না কিছু লোক খুঁজে বের করে যে, সে পুরোপুরি আর্য নয়।'' যে বছর রোসাকে আর যোগাযোগ না করার জন্য বলা হয়, তখন থেকেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরু। ছয় বছর পর যখন তার সমাপ্তি ঘটে, ততোদিনে ৬০ লাখ ইহুদি নিহত হয়েছে। সেই যুদ্ধ থেকে বাঁচতে পারেনি রোসাও। হিটলারের সঙ্গে পরিচয়ের দশ বছর পর, ১৯৪৩ সালে মিউনিখের একটি হাসপাতালে পোলিওতে আক্রান্ত হয়ে ১৭ বছর বয়সে মারা যায় রোসা। একজন বয়স্ক ব্যক্তি একটি বালিকাকে হাসিমুখে জড়িয়ে ধরে আছে, প্রথম দর্শনে উপরের ছবিটি দেখে মনে হবে পারে বেশ হাসিখুশি একটা ব্যাপার। +text: মুম্বাইয়ের সান্টাক্রুজ এলাকায় স্বাস্থ্যকর্মীদের একটি দল কোভিড-১৯ সংক্রমণের লক্ষণ পরীক্ষা করছেন তাদের কথা, ভারত হয়তো ইতোমধ্যেই করোনাভাইরাস সংক্রমণের 'তৃতীয় পর্যায়ে' পৌঁছে গেছে বা তার খুব কাছাকাছি চলে গেছে - অর্থাৎ স্থানীয় লোকদের থেকেই অন্যরা সংক্রমিত হচ্ছেন। "এমন কিছু রোগী পাওয়া গেছে যারা বিদেশ থেকে আসেন নি, অথবা বিদেশ থেকে সংক্রমণ নিয়ে ফিরেছেন এমন ব্যক্তির সংস্পর্শেও আসেন নি। কিন্তু তবুও তাদের দেহে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে - যা তৃতীয় পর্যায়ের সংক্রমণের লক্ষণ" - বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন করোনাভাইরাস চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় টাস্ক ফোর্সের সমন্বয়ক, ডা. গিরিধার গিয়ানি। তিনি অবশ্য এটাও বলেন যে, ভারত যে এখনই তৃতীয় পর্যায়ে পৌঁছে গেছে তা পুরোপুরি নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। "কিন্তু এটা নিশ্চিত যে তৃতীয় পর্যায়ের একেবারে দোরগোড়ায় রয়েছে ভারত" - বলেন ডা. গিয়ানি। তার এ সংশয়ের কারণ হলো, ভারতে এখন প্রতি দশ লক্ষ মানুষের মধ্যে মাত্র ১৮ জনের ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস সংক্রমণের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এক পরিসংখ্যানে প্রতীয়মান হচ্ছে যে ভারতে একশোরও বেশি পরীক্ষাগারে এখন প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজারের মতো করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। সে হিসাবে প্রতি দশ লাখ মানুষের মধ্যে মাত্র ১৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: ভারতে যে লোকটি একাই 'সংক্রমিত করেছেন' ৪০ হাজার লোককে সংক্রমণ ভীতিতে ভারতে অনেক সংবাদপত্র ছাপা বন্ধ করোনাভাইরাস বিশেষজ্ঞদের মতে, পরীক্ষা এত কম হওয়ার কারণেই বোঝা যাচ্ছে ���া যে ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রকৃত ব্যাপকতা ঠিক কতটা। তাদের কেউ কেউ বলছেন, ইতিমধ্যেই ভাইরাস সংক্রমণের তৃতীয় পর্যায়ে পৌঁছে গেছে ভারত। তবে উপসর্গ থাকা মানুষদের নমুনা আরও ব্যাপক হারে পরীক্ষা না করলে চিত্রটা পরিষ্কার হবে না - এমনটাই বলছেন তারা। "সংশ্লিষ্ট সবাইকে একটা বিষয় বোঝাতে আমি সক্ষম হয়েছি যে যে তৃতীয় পর্যায় আসার জন্য অপেক্ষা না করে এখনই প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করা দরকার। সত্যিই যদি তৃতীয় পর্যায়ে সংক্রমণ পৌঁছে যায়, তখন কিন্তু আর কিছুই করার থাকবে না," বলছিলেন গিরিধার গিয়ানি। তার কথায়, প্রতিটা বড় বা ছোট শহরে প্রচুর আই সি ইউ বেডের প্রয়োজন হবে - যার অর্ধেকের সঙ্গে ভেন্টিলেটার প্রয়োজন হবে। দিল্লিতেই প্রায় হাজার তিনেক, মুম্বাইতে আড়াই হাজার এবং ব্যাঙ্গালোরের মতো শহরে দুহাজার আই সি ইউ বেড দরকার। একই সঙ্গে নমুনা পরীক্ষার হারও বাড়াতে হবে বলে জানালেন ডা. গিয়ানি। "ব্যাপক হারে পরীক্ষা একারণেই করা হচ্ছে না, যে অদূর ভবিষ্যতে যদি প্রচুর সংখ্যক রোগীর পরীক্ষা করার প্রয়োজন হয়, তাদের জন্যও তো কিট রাখতে হবে! এখনই যদি সব কিট শেষ করে ফেলা হয়, তখন কী হবে! সেজন্যই এখন শুধুমাত্র তিনটি উপসর্গ আছে - এমন মানুষদেরই পরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে নতুন করে পরীক্ষা কিট আনা হচ্ছে।" যে কিট দিয়ে এখন করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে, সেটি অত্যন্ত দামী - প্রায় সাড়ে চার হাজার টাকা একেকটি কিটের দাম। তবে ভারতীয় গবেষণাগারগুলি তার থেকে অনেক কম দামে কিট তৈরি করার পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে। হায়দ্রাবাদের কেন্দ্রীয় সরকারি গবেষণাগার - সেন্টার ফর সেলুলার এন্ড মলিকিউলার বায়োলজিতেও চলছে এমনই কিট উদ্ভাবনের কাজ। সি সি এম বি-র পরিচালক রাকেশ মিশ্র বলছিলেন, তাদের গবেষণাগার থেকে যে কিট তৈরি হবে তার দাম এক হাজার টাকার মতো হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এমন কি চার থেকে পাঁচশো টাকাতেও দাম নেমে আসতে পারে। তাদের গবেষণাগারে তৈরি করা নমুনা পরীক্ষা কিট ১০০ শতাংশ নির্ভুল ফলাফল দিচ্ছে কী না, সেটা আর সপ্তাহ কয়েকের মধ্যেই জানা যাবে। নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন করোনাভাইরাসের উৎপত্তি কোথায়, কেন এতো প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরিতে অগ্রগ���ি কতদূর? ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ আসলে কত ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে তা বোঝা সম্ভব হচ্ছে না, কারণ দেশটিতে সম্ভাব্য আক্রান্তদের নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে খুবই কম পরিমাণে - বলছেন বিশেষজ্ঞরা। +text: ভারতে ডিজেলের দাম রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ যদিও দাবি করেছে ডিজেল পাচারের ঘটনা এখনও ততটা উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছয়নি, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন কিন্তু এই চোরাচালানের ফলে এর মধ্যেই বিপুল রাজস্ব হারাতে শুরু করেছে - এবং সীমান্ত এলাকার পেট্রোল পাম্পগুলোতে তারা মনিটরিংও শুরু করেছে। ভারতেও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ভারত যতদিন না জ্বালানি তেলে শুল্ক ও করের পরিমাণ কমাবে ততদিন এই পাচারের সমস্যা থেকেই যাবে। ভারতে ডিজেলের দাম এখন প্রায় প্রতিদিনই পুরনো রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাচ্ছে। বাংলাদেশ লাগোয়া ভারতের আসাম বা পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে ডিজেল বিকোচ্ছে প্রতি লিটার ৭১ রুপিতে, যা ৮৮ বাংলাদেশি টাকার সমান। সেই জায়গায় বাংলাদেশের ভেতরে ডিজেলের দাম মাত্র ৬৫ টাকা লিটার - আর ঠিক সেই কারণেই সীমান্ত এলাকায় হঠাৎ করে বেড়ে গেছে জ্বালানি তেলের চোরাকারবার। দিল্লির থিঙ্ক ট্যাঙ্ক 'ইকরিয়ের' আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ে গবেষণা করে থাকে, তাদের প্রধান অর্থনীতিবিদ অর্পিতা মুখার্জি বলছিলেন - পাশাপাশি দুটো দেশে জ্বালানির দামে এতটা ফারাক থাকলে স্মাগলিং ঠেকানো খুব মুশকিল। বাংলাদেশের সাথে ভারতের ডিজেলের দামে বিরাট ফারাক চোরাচালানকে উৎসাহিত করছে তার কথায়, "যেখানে দুটো দেশে জ্বালানির দামের পার্থক্য এত বেশি এবং সীমান্তও নিশ্ছিদ্র নয়, সেখানে এটা হবারই ছিল। বস্তুত বাংলাদেশ বা আরও অন্যান্য সার্ক দেশ থেকে জ্বালানি পাচারের এই সমস্যাটা বারে বারেই ঘটেছে - আর ফারাকটা না কমলে ঘটেই চলবে।" "হয়তো তারা বিরাট কোনও স্কেলে করতে পারবে না, বড় রাস্তা দিয়ে ট্যাঙ্কারে করে হয়তো তেল পাচার করা যাবে না - কিন্তু ছোট ছোট মাপে এটা চলতেই থাকবে", বলছিলেন ড: মুখার্জি। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন বা বিপিসি-র চেয়ারম্যান আকরাম আল হোসেনও এদিন বিবিসিকে জানিয়েছেন, তারা এই সমস্যা সম্পর্কে অবহিত। ওই সংস্থার শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা মহম্মদ আবু হানিফও জানাচ্ছেন তাদের ভর্তুকি-দেওয়া ডিজেল যে ভারতে পাচার হয়ে যাচ্ছে এটা মনে করার যথেষ্ট কারণ আ���ে। তিনি বলছিলেন, "আমাদের প্রতি লিটার ডিজেলে প্রায় বাইশ-তেইশ টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়। এখন আমাদের সীমান্ত এলাকার পাম্পগুলোতে ডিজেলের চাহিদা হঠাৎ বেড়ে গেছে কি না বলা মুশকিল - তবে আমরা আমাদের সব তেল কোম্পানিকে বলেছি তারা যেন ওখানকার সব পাম্পে ভাল করে যাচাই-বাছাই করে তার পরেই তেল দেয়।" "আরও একটা ব্যাপার আছে। বেনাপোল বা বাংলাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে যে সব ট্রাক আসে তারা কিন্তু ট্যাঙ্ক প্রায় খালি করে ঢোকে আর যাওয়ার সময় তারা ট্যাঙ্ক পুরোটাই ভর্তি করে নিয়ে যায়। প্রতিদিন এভাবে একশো থেকে দেড়শো ট্রাকও কিন্তু একরকম সস্তার ডিজেল পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে বলতে পারেন", বলছিলেন মি হানিফ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বালানি তেল সহজে বহনযোগ্য নয় বলে চোরাচালান খুব বেশি বাড়তে পারবে না তবে ট্রাক ভর্তি করে ডিজেল ভারতে নিয়ে যাওয়া হলেও - ফেন্সিডিল বা এমন কী গরুর মতো অত সহজে এই দাহ্য পদার্থটি পাচার করা যায় না বলেই দাবি করছে বিএসএফ। এমন কী ভারতে ডিজেলের দাম বাংলাদেশের তুলনায় ৩৩ শতাংশ বেশি হলেও এই মার্জিনটা তত লোভনীয় নয়, বলছিলেন আসামের ধুবড়িতে বিএসএফ কমান্ড্যান্ট আর কে দুয়া। মি. দুয়া বিবিসিকে বলছিলেন, "যে কোনও স্মাগলড জিনিস অনেক হাত ঘুরে যায় - তাদের সবাইকে খুশি রাখতে হয়। কিন্তু ডিজেলে অতটা মার্জিন কোথায়?" "একটা গরুর দাম ভারতে দশ হাজার আর বাংলাদেশে ২৫ হাজার, কাজেই সেটা পাচার করা হয়তো পোষায় - কিন্তু সীমান্তে দুই পারে ডিলার-এজেন্ট-দালাল-কুরিয়ার সবাইকে খুশি করে ডিজেল পাচারে ততটা কিন্তু মুনাফা করা সম্ভব নয়!" তারপরেও ভারত-বাংলাদেশের মধ্যেকার চার হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ সীমান্ত দিয়ে ছোট ছোট জ্যারিকেন বা কন্টেনারে করে ডিজেল পাচারের ঘটনা সম্প্রতি খুব বেড়ে গেছে - আর সেটার কারণ ভারতে আকাশছোঁয়া দাম। গবেষক অর্পিতা মুখার্জি বলছিলেন, ডিজেলে বাংলাদেশের ভর্তুকি নয় - বরং ভারতের বসানো শুল্ক আর করই এই সমস্যার মূলে। "অন্য কোনও দেশ তেলে ভর্তুকি দিলে আপনার কিছু করার নেই। কিন্তু আমরা যেটা দেখতেই পারি, বাড়তি কর বা শুল্ক চাপিয়ে আমরা দামের ফারাকটাকে আরও বেশি বাড়িয়ে দিচ্ছি না তো?" "জ্বালানিতে বাড়তি কর বসানোর মানে কিন্তু আপনি কিন্তু আপনার গোটা অর্থনীতিটাকেই প্রতিযোগিতার পরিপন্থী করে তুলছেন। আমি যতদূর জানি জ্বালানিতে বাংলাদেশের ভর্তুকি তত কিছু নয় - বরং সমস্যাটা ভারতেরই, কারণ তারা জ্বালানি তেলের ওপর বিরাট অঙ্কের কর বসিয়ে রেখেছে", বলছিলেন অর্পিতা মুখার্জি। ২০১৪-র নভেম্বর থেকে এযাবত ভারতের বিজেপি সরকার মোট ন'বার জ্বালানি তেলের ওপর এক্সাইজ ডিউটি বাড়িয়েছে - আর কমিয়েছে মাত্র একবার। ভারতে জ্বালানি তেলকে জিএসটি-র আওতাতেও আনা হয়নি, কাজেই প্রতিবেশী দেশ থেকে এই চোরাচালানের সমস্যা অবধারিত ছিল বলেই বিশেষজ্ঞদের অভিমত। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: 'বাংলাদেশে মাদকাসক্ত ফিলিপিনের চেয়েও বেশি' ফটো শেয়ার: 'বাচ্চাদের ঝুঁকিতে ফেলছেন বাবা-মা' ঈদের বাজারে জাল নোটের ঝুঁকি, কীভাবে চিনবেন? চাকরিতে বিদেশীদের নিয়োগ নিয়ে কী বলছে মানুষ? নারীর পেটে যেভাবে এলো একশোর বেশি কোকেন ক্যাপসুল হৃদরোগ ঠেকাতে সপ্তাহে অন্তত চারদিন ব্যায়াম ভারতে জ্বালানি তেলের দাম সর্বকালীন রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছনোর পর প্রতিবেশী বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের ডিজেলের দামে বিরাট ফারাক তৈরি হয়েছে - এবং এর ফলে সীমান্ত এলাকায় ডিজেলের চোরাচালান আচমকাই বেড়ে গেছে বলে বিবিসি জানতে পেরেছে। +text: মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছে অসংখ্য মানুষ এবারের পহেলা বৈশাখ এমন এক সময়ে পালিত হচ্ছে যখন বৈশাখের অন্যতম আকর্ষণ মঙ্গল শোভাযাত্রা পালনে আপত্তি জানিয়েছে ইসলামপন্থী কোন কোন সংগঠন। আবার যেকোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা বা নাশকতা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানা বিধিনিষেধের পাশাপাশি ছিলো উৎসব এলাকায় কঠোর অবস্থান। এসব কিছু- ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়া এই মঙ্গল শোভাযাত্রা উদযাপনের উপর কতটা প্রভাব ফেলেছে? আনন্দলোকে মঙ্গল আলোকে বিরাজ সত্য সুন্দর'- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে নতুন বছর ১৪২৪ কে বরণ করে নিতে আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ শোভাযাত্রার আয়োজন করে। ঘোড়া, বিশাল বাঘের মুখ, সমৃদ্ধির প্রতীক হাতি আর টেপা পুতুল- সবাই ছিল মঙ্গল শোভাযাত্রায়। বর্ষবরণ: নানা সাজে সজ্জিত মানুষ সকাল নয়টার দিকে চারুকলা থেকে শুরু হয় কিন্তু নিয়মিত রুট বা পথে অনেকটা সংক্ষিপ্ত করে শুধুমাত্র টিএসসির চত্বরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে এবারের শোভাযাত্রা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বনানী থেকে আসা শারমিন আক্তার বীথি। গতবছর পহেলা বৈশাখ বরণ করে নেয়ার অপেক্ষাকৃত নতুন এই উৎসবটি ইউনেস্কোর অপরিমেয় বিশ্ব সংস্কৃতি হিসেবে স্বীকৃ��ি পেয়েছে। স্বীকৃতির পর এবছর এটি আরো ব্যাপকভাবে পালনের উদ্যোগও ছিল। কিন্তু এবারের পহেলা বৈশাখের এই মঙ্গল শোভাযাত্রা এমন এক সময়ে হয়েছে যখন ধর্মভিত্তিক কিছু সংগঠনের পক্ষ থেকে আপত্তি এসেছে। রমনা বটমূলে ছায়ানটের ঐতিহ্যবাহী বর্ষবরণ আব্দুর রহিম বাপ্পি সাত বছর ধরে নিয়মিত আসেন। তিনি বলেন মানুষের মধ্যে এই বিষয়টা নিয়ে আতঙ্ক কাজ করছে। সন্তোষ সাহা যিনি প্রতিবার আসেন তিনি বলছিলেন এই আপত্তির কারণে মঙ্গলশোভাযাত্রায় মানুষের অংশ গ্রহণ ছিল তুলনামূলক কম। তবে অনেকে এসেছেন এই উৎসবের আয়োজনে সামিল হতে স্বত:স্ফুর্তভাবে। সাইফুর রহমান তাদের মধ্যে একজন। স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে এসেছেন। মঙ্গল শোভাযাত্রা এবছর ২৮ বছরে পা দিলো। শোভাযাত্রার সামনে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল চোখে পড়ার মত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানকে অনেকে অসুবিধা হিসেবেই উল্লেখ করলেন। এমন বেশ কিছু চেকপোস্ট আর তল্লাশি গেট পেরিয়ে মানুষকে অনুষ্ঠানস্থলে যেতে হয়েছে যদিও আয়োজকরা এই মঙ্গল শোভাযাত্রাকে সফল হিসেবেই দেখছেন। যদিও পহেলা বৈশাখের অন্যতম আকর্ষণ এই শোভাযাত্রায় আয়োজন, উৎযাপন ও পরিবেশ নেয়ে কোথায় যেন একটা অস্বস্তি লক্ষ্য করা গেছে উৎসব আসা মানুষদের মাঝে। কট্ররপন্থী ইসলামি সংগঠনগুলোর আপত্তি আর পুলিশের নানা বিধিনিষেদের মধ্যে আজ পালিত হলো বাংলা নববর্ষ বরণে নানা অনুষ্ঠান। +text: সামাজিক ম্যাধমে নেতিবাচক যেকোন কিছু কারণ হতে পারে সুনাম নষ্টের। "এই বিষয়টিকে গুরুত্ব-সহকারে না নিলে তা আপনার প্রতিষ্ঠানের ওপর আর্থিক।ভাবে এবং সাংস্কৃতিক-ভাবে প্রভাব ফেলবে।" ফেসবুক এবং টুইটারে প্রযুক্তিগত পদ্ধতিতে অভিযান পরিচালিত হলেও ফেক নিউজ বা ভুয়া খবর অন্যতম বড় একটি চ্যালেঞ্জ। উদাহরণ হিসেবে, গত মে মাসে ব্রিটেনের মেট্রো ব্যাংকের শেয়ার ১১% ধ্বস নামে কারণ প্রতিষ্ঠানটি অর্থনৈতিক সংকটের মোকাবেলা করছে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুল তথ্য দিয়ে গুজব ছড়িয়ে গিয়েছিল। জেনেভা-ভিত্তিক ইন্টারনেট নিরাপত্তা বিষয়ক কোম্পানি ইমিউনইওয়েব-এর ইলিয়া কোলোচেঙ্কোর মতে, এর ফলাফল যথেষ্ট খারাপ হতে পারে । বোমা ফেলার খবর! হ্যাকাররা যদি সোশ্যাল মিডিয়াতে কোনো ভুয়া খবর পোস্ট করার সুযোগ পেয়ে যায় তাহলে তা বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে, বলেন মি. কোলোচেঙ্কো। "ধারণা করুন যে তারা (হ্যাকা��রা) যদি বিবিসি অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে সক্ষম হয় এবং এমন একটি খবরের পোস্ট দিতে পারে যে ইরান একটি নিউক্লিয়ার বোমা নিক্ষেপ করেছে - এর প্রভাব হবে মারাত্মক। বিশেষ করে অন্যান্য নিউজ নেটওয়ার্ক যদি সেই খবর নিয়ে নিজেরা খবর পরিবেশন করে।" আরো পড়তে পারেন: সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় ৬৫ শতাংশ মাদ্রাসা শিক্ষার্থী শ্রীলংকায় সামাজিক মাধ্যম কেন বন্ধ করা হলো? ভারতে নারী এমপির বক্তব্যে সরগরম সামাজিক মাধ্যম শিশুদের 'মানসিক সমস্যা তৈরি করছে' সোশ্যাল মিডিয়া অনেক মানুষ নিজেদের সম্পর্কে সামাজিক মাধ্যমে অনেক তথ্য লিখে দেন। সুতরাং হামলাকারীরা কারো একজনের প্রোফাইল দেখে তাদের সম্পর্কে ধারণা পায় এবং সেভাবে হয়তো তাদের কাছে প্রতারণা মূলক বা ফাঁদে ফেলার জন্য মেইল পাঠিয়ে দেয়। আপনার পণ্যের বা ব্র্যান্ডের সুনাম নষ্ট করে দেয়ার জন্য 'ভুল' সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টই শুধু নয়, বরং কখনো কখনো 'সত্য'ও ক্ষতির কারণ হতে পারে। ২০১৬ সালে ব্যাটারি প্রস্তুতকারী স্যামসাং এসডিআই'এর বাজার মূল্য অর্ধ-বিলিয়ন ডলারের বেশি পড়ে যায় যখন টেসলা প্রধান এলন মাস্ক টুইট করেন যে, কোম্পানিটি প্যানাসনিকের সাথে তাদের আগামী ইলেক্ট্রনিক গাড়ি বিষয়ে কাজ করছে। সুতরাং যথাযথভাবে ভেবেচিন্তে পোস্ট না করলে আপনার নিজের লেখা কোনো পোস্টই হয়তো সমস্যা ডেকে আনবে, যেমনটা এই বছরের শুরুতে মোকাবেলা করতে হয়েছে মার্কিন ব্যাংক চেজ'কে। তারা একটি পোস্ট দিয়েছিল যার বক্তব্য ছিল, কম ব্যাংক ব্যালেন্সের অধিকারী বা ব্যাংকে যাদের টাকা কম আছে, তারা ট্যাক্সিতে চড়া কিংবা কফি কেনা থেকে নিজেদের বিরত রেখে টাকা সঞ্চয় করে। যেকোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সম্পর্কে অনলাইন পোস্টের ম্যাধমে হ্যাকাররা অনেককিছু জানতে পারে। সুনাম চুরি অন্যান্য হুমকির মধ্যে জালিয়াতরা আপনার ব্র্যান্ড নাম নিজেদের দখলে নিয়ে নিতে পারে। মিস্টার কোলোচেঙ্কো বলেন, সৃজনশীল ধাপ্পাবাজেরা প্রায়ই বড় বড় প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে সোশ্যাল মিডিয়াতে কেলেঙ্কারির ঘটনাগুলো করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, তারা নিশ্চিতভাবে একটি 'অ্যামাজন ইন্ডিয়া সাপোর্ট' নাম দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলবে টুইটারে এবং যারা তাদের সাথে যোগাযোগ করবে, সেসব গ্রাহকদেরকে জানাবে তাদের না পাওয়া পার্সেলগুলো বুঝে পেতে শুল্ক ফি পাঠাতে। এমনকি অচেনা গ্রাহকের পোস্ট থ���কেও ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে, যদি; অন্যান্য ব্যবহারকারীরা সেটাকে মূল্যায়ন করে। "ভোক্তারা গ্রাহকদের পণ্য ব্যবহারের অভিজ্ঞতা বা প্রতিক্রিয়া জানতে সোশ্যাল মিডিয়াকে দ্রুতগতিসম্পন্ন প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গ্রহণ করে",বলেন আরেকজন সোশ্যাল মিডিয়া ডিরেক্টর ক্লের তোওহিল। এ কারণে সরবরাহ ব্যবস্থা, কিংবা কোনো জনপ্রিয় পণ্যের পরিবর্তনের ফলাফল হিসেবে প্রায়ই সামাজিক মাধ্যমে হামলার ঘটনা দেখা যায়। তবে কারণ যাই হোক না কেন প্রতিক্রিয়া দেখাতে হবে সবার আগে। 'পরিকল্পনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ' মাশা মাকসিমাভা, বেলারুশের সোশ্যাল মনিটরিং কোম্পানি আওয়ারিও-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট, বলেন অনলাইন সুনাম ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নেতিবাচক ফিডব্যাকের দ্রুত মোকাবেলা করতে হবে যাতে তা সংকটে মোড় নিতে না পারে। তাই পরিকল্পনা করতে হবে গুরুত্ব সহকারে। গ্লোবাল প্রফেশনাল সার্ভিস প্রোভাইডার ইওয়াই এর অ্যাসোসিয়েট পার্টনার লোপা ঘোষের মতে, পরিকল্পনা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি ওভার রিয়্যাক্ট বা অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া না দেখানোও সমানভাবে গুরুত্বপূণ। "সব ধরনের নেতিবাচক টুইট বা পোস্টের জবাব দিতে ঝাঁপিয়ে পড়লে হবেনা", বলেন মিজ তোহিল। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: সৌদি রাজকন্যার বিরুদ্ধে বিচার শুরু করলো প্যারিস 'সবক্ষেত্রেই মূল সমস্যা অস্বীকার করে সরকার' মদের টাকা জোগাতে শিশুপুত্রকে বিক্রির অভিযোগ ডাকওয়ার্থ লুইস মেথড কীভাবে কাজ করে? ইলিয়া কোলোচেঙ্কো বলছেন হ্যাকাররা কর্পোরেট সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট মালিকদের জন্য হুমকি অনেকসময় সমস্যার কারণ তৈরি না করে তা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য চুপচাপ থাকাই শ্রেয়। সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সুনাম পুনরায় তৈরির দারুণ ক্ষেত্র, বলেন মিস্টার নট। "সুতরাং সংকটের সময় তা থকে উত্তরণ ঘটিয়ে নিজের কোম্পানির মূল্যবোধ ও মানবিক দিক কীভাবে তুলে ধরবেন সেটা ভাবতে চেষ্টা করুন।" কর্মজীবীদের জন্য সামাজিক মাধ্যমের বিচরণ একটা বড় ফাঁদ। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সাইবার অপরাধীরা সামাজিক মাধ্যম থেকে অনেক সময় চাকরিজীবীদের কোম্পানি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ রিচার্ড হর্ন বলেন, "অনেক মানুষ নিজেদের সম্পর্কে সামাজিক মাধ্যমে অনেক তথ্য লিখে দেন। সুতরাং হামলাকারীরা কারো একজনের প্রোফাইল দেখে তাদের সম্পর্কে ধারণা পায় এবং সেভাবে হয়তো তাদের কাছে প্রতারণা মূলক বা ফাঁদে ফেলার জন্য মেইল পাঠিয়ে দেয়।" "কোম্পানির সিস্টেমকে আক্রান্ত করার জন্য এটা একটা সাধারণ পদ্ধতি।" পাসওয়ার্ড এবং পোস্ট কিভাবে প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা নিরাপদ সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবে তার ব্যবস্থাপনা করাটা একটি চ্যালেঞ্জ। "নিয়োগদাতাদের পক্ষে কর্মীদের সামাজিক মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট মনিটর করা সম্ভব নয়",বলেন মিজ ঘোষ। এর পরিবর্তে তাদের এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে এবং নিজেদের পাসওয়ার্ড ও সোশ্যাল পোস্ট নিরাপদ রাখার বিষয়ে জানাতে হবে। লন্ডন ভিত্তিক রেপুটেশন ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির পরামর্শক এম হারভে বলেন, কোনো ঘটনা ঘটলে, কর্মীরা প্রটোকল যেন বুঝতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে এবং প্রতিষ্ঠানকে রক্ষার চেষ্টা করে আগুন যেন আরও উস্কে না দেয় সেবিষয়ে নজর রাখতে হবে। সামাজিক তদারকির মাধ্যমে সুবিধা আদায় নজরদারি অথবা লিসেনিং অ্যাপস যেগুলো সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্ক থেকে প্রভাইড করা হয়, সেগুলোর মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণ করে হারানো সুনাম পুনরুদ্ধার সম্ভব। হতে পারে। হ্যাকারদের মাধ্যমে, কিংবা অসন্তুষ্ট ক্রেতা অথবা আপনার পোস্ট করা কোনকিছুর বিরুদ্ধে সাধারণ নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া, নেতিবাচক সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্ট এক মুহুর্তে নষ্ট করে দিতে পারে আপনার পণ্যের তিল তিল করে গড়া সুনাম। "সামাজিক মাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়া হচ্ছে আপনার কোম্পানির সুনামের জন্য সবচেয়ে নিকটতম হুমকি",বলেছেন একজন কনসাল্ট্যান্ট পিট নট, যিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সুনাম ধরে রাখা এবং তা ব্যবস্থাপনা বিষয়ক একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। +text: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমদ বৃহস্পতিবার বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমদ এবং কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকনকে আটক করা হয়েছে বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ঢাকার হাইকোর্ট এলাকা থেকে এ দুজনকে আটক করা হয়। বিকেলে তাদের আদালতে তোলা হলে তাদের জামিন মঞ্জুর করে আদালত। এছাড়া মঙ্গলবার রাতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলে সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতকে বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়। গত মঙ্গলবার দুপুরে হাইকোর্ট এলাকায় খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির একটি মিছিল বেরুনোর পর দলটির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ��ুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় হাইকোর্ট এলাকায় গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করে পুলিশ। ইশতিয়াক আজিজ উলফাতকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন আদালত চত্বরে আইএস-এর প্রতীক প্রদর্শন নিয়ে প্রশ্ন মাথায় বলের আঘাত মারাত্মক কি না বোঝার উপায় কাশ্মীরে কি 'ইসরায়েলি মডেল' চাপাতে চায় ভারত? বিএনপির তরফ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, হাইকোর্টের সামনে সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন করে ধরপাকড় শুরু হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। বিএনপির একটি সূত্র বলছে, হাইকোর্ট এলাকায় সংঘটিত ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর থেকে বিএনপির অনেক নেতা এখন আত্মগোপনে আছেন। এদিকে হাইকোর্টের সামনের ভাঙচুরের মামলায় আগাম জামিন নিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে হাইকোর্টে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ কয়েকজন নেতা। তাদের মধ্যে ছিলেন মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, কায়সার কামাল। আদালত তাদেরকে আট সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছে। গত মঙ্গলবার জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম দল নামক সংগঠন প্রেসক্লাবে একটি অনুষ্ঠান করে। এরপর তাদের হাইকোর্টের সামনে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, অনেকটা হঠাৎ করেই দুপুরে হাইকোর্ট এলাকায় সড়কে অবস্থান নিয়ে মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করে প্রজন্ম দলের নেতা-কর্মীরা। এসময় হাইকোর্টের প্রধান প্রবেশপথ থেকে মাজার গেট পর্যন্ত এলাকায় তাদের বিপুল সংখ্যক কর্মী সমর্থক অবস্থান নেয়। তাদের হাতে এ সময় খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়াও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ সম্বলিত প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন দেখা যায়। বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি'র কয়েকজন নেতাকে গত দুই দিনে আটক করেছে পুলিশ। +text: নকল কণ্ঠস্বর তৈরি করে প্রচুর অর্থ সরিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারকচক্র। সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা সিমেন্টেক বলছে, কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর কণ্ঠ ডিপফেক অডিও প্রযুক্তির মাধ্যমে নকল করে অর্থ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে সিনিয়র অর্থ নিয়ন্ত্রক কর্মকতার কাছ থেকে। আর এমন ঘটনার প্রমাণ মিলেছে অন্তত তিনটি। ডিপফেক প্রযুক্তিতে প্রতারণামূলক ভুয়া বা নকল ফুটেজ তৈরিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার করা হয়। সিমেন্টেক বলছে, এআই বা আর্টিফেশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সিস্টেমটি প্রথমে সেই নির্দিষ্ট প্রধান নির্বাহী ব্যক্তির সাধারণভাবে বলা বহু কথা বা অডিও সংগ্রহ করে থাকে। আরো পড়তে পারেন: নিজের কণ্ঠস্বর নিয়ে এই ৭টি তথ্য আপনি জানেন কি? সিলিকন ভ্যালি কেন প্রযুক্তিমুক্ত শৈশবের পক্ষে প্রযুক্তি ব্যবহার করে কি ধানের দাম বাড়ানো যাবে? ফেসবুক-ইউটিউবে নিয়ন্ত্রণ: কী করতে চায় সরকার? ডিপফেক অডিও ব্যবহার করে লাখ লাখ পাউন্ড চুরি করছে প্রতারকরা প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ড. হাফ থমসন বলছেন যে, কণ্ঠস্বরের মডেল তৈরি করতে এক্ষেত্রে হয়তো কর্পোরেট ভিডিও, ফোন কল, কনফারেন্সে দেওয়া ভাষণ- বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে অডিও সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। তিনি বলেন, "মডেলটি একেবারে নিখুঁত হতে পারে।" আর সেই সাথে প্রতারকচক্র চতুরতার সাথে ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড ব্যবহার করে যাতে করে শব্দগুলো বিশ্বাসযোগ্য হয় ও ভালোভাবে একটি অংশ অপরটির সাথে মিশে যায়। আট্রিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষজ্ঞ ড. আলেকজান্ডার অ্যাডাম বলছেন, একটি নিখুঁত নকল অডিও তৈরির জন্যে সময় এবং অর্থের উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ করা হয়। তিনি বলেন, "মডেলদের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রেই হাজার পাউন্ড খরচ করা হয়।" তার মতে, মানুষের শ্রবণ শক্তি খুবই সংবেদনশীল বিস্তৃত ফ্রিকোয়েন্সির শব্দের ক্ষেত্রে। আর সেজন্যে বিশ্বাসযোগ্য কণ্ঠ তৈরিতে বহু সময় দিতে হয়। নির্দিষ্ট ব্যক্তির স্বরভঙ্গি এবং কথা বলার ছন্দ মেলাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যয় করতে হয়। একটি নিরাপত্তা সংস্থা বলছে যে, ডিপফেক অডিও প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে লাখ লাখ পাউন্ড চুরি করার কাজে। +text: ফেসবুক বলছে তারা বরং তাদের পলিসির দিকে বেশি নজর দেবে যাদের একমাত্র কাজ ছিল ঐ দলের অনলাইন বিজ্ঞাপন কিভাবে বাড়ানো যায় বা উন্নত করা যায় তাতে সাহায্য করা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ডিজিটাল পরিচালক বলেছিলেন ফেসবুকের সাহায্যকারী তাকে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিততে সাহায্য করেছিল। ফেসবুক বলছে ঐ নির্বাচনে আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনকে একই সার্পোট দেয়ার অফার করা হয়, কিন্তু তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। সামাজিক যোগাযোগের এই মাধ্যম ফেসবুক,গুগলের পরেই সবচেয়ে বড় অনলাইন অ্যাডভারটাইসিং ব্রোকার। গুগল এবং টুইটার'ও রাজনৈতিক প্রচারণায় বিশেষ উপদেশ দেয়ার প্রস্তাব দিয়ে থাকে। কিন্তু ফেসবুকের মত তারা বলেনি যে তারা সেটা আর করবে না বা বন্ধ করার কোন ইঙ্গিতও দেয়নি। এদিকে ফেসবুক বলছে তারা বরং সব রাজনৈতিক দলের জন্য তাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই বিনামূল্যে বিজ্ঞাপনের ব্যাপারে উপদেশ দেবে। যাইহোক, ফেসবুক কিন্তু এটা বলেনি যে তারা রাজনৈতিক নেতাদের সাথে বৈঠক করাও বন্ধ করে দেবে। ব্লুমবার্গের তথ্যমতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ৪৪ মিলিয়ন ডলার ফেসবুকের পিছনে খরচ করেছিলেন তার নির্বাচনী প্রচারণার জন্য। ব্লুমবার্গের তথ্যমতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ৪৪ মিলিয়ন ডলার ফেসবুকের পিছনে খরচ করেছিলেন তার নির্বাচনী প্রচারণার জন্য। ফেসবুক থেকে গ্রাহকদের তথ্য চুরির কেলেঙ্কারি সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় এই মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারকারীদেরকে না জানিয়েই লাখ লাখ গ্রাহকের তথ্য নিজেদের বাণিজ্যিক প্রয়োজনে ব্যবহার করেছিল রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ এনালিটিকা। তারা ৫০ মিলিয়ন গ্রাহকের তথ্য বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছে—এমন তথ্য ফাঁস হলে আলোড়ন শুরু হয়। কংগ্রেসের শুনানীতে মার্ক জাকারবার্গ গ্রাহকের অজ্ঞাতে বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশে তাদের তথ্য ব্যাবহার করার এই খবর রটে গেলে, ফেসবুক প্রধান মার্ক জাকারবার্গকে ব্রিটিশ সংসদে তলব করা হয়। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ এ বিষয়ে তাদের ভুল হয়েছিল স্বীকার করেন এবং গ্রাহকদের তথ্য তৃতীয় পক্ষের হাতে চলে যাবার এই ঘটনাটিকে 'গ্রাহকদের সাথে বিশ্বাসভঙ্গ' করার সামিল বলে ফেসবুকে দেয়া বিবৃতিতে মন্তব্য করেছেন । বিভিন্ন অ্যাপ, ভবিষ্যতে যাতে ফেসবুক কে ব্যাবহার করে গ্রাহকদের তথ্য সহজে হাতিয়ে নিতে না পারে সেজন্য সামনের দিনগুলোতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আরও বেশ কিছু পরিবর্তন আনার অঙ্গিকারও করেছিলেন তিনি। ফেসবুকের সিইও মি. জাকারবার্গ গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আপনার তথ্যের নিরাপত্তা দেয়া আমাদের দায়িত্ব। কিন্তু সেটি দিতে ব্যর্থ হলে আমাদের সেবা দেয়ার কোনও অধিকার থাকবে না। ক্যামব্রিজ এনালিটিকা ট্রাম্পের পক্ষে ডিজিটাল প্রচারণা চালানোর সুবিধার জন্য গ্রাহকদের তথ্য ফেসবুক থেকে কৌশলে হাতিয়ে নেয়, এই অভিযোগ প্রকাশিত হওয়ার পরপরই তুমুল আলোড়ন শুরু হয় এবং ক্যামব্রিজ এনালিটিকার প্রধান নির্বাহীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। ব্রিটেনে তোপের মুখে পড়ে ফেসবুক ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারির জের ধরে ব্রিটেনের তথ্য অধিকার সংরক্ষণ বিষয়ক সংস্থা ফেসবুককে পাঁচ লক্ষ পাউন্ড জরিমানার পরিকল্পনা করে। ব্রিটেনে এটাই হবে এ ধরণের সবচেয়ে বড় অংকের জরিমানা। ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারির জের ধরে ব্রিটেনের তথ্য অধিকার সংরক্ষণ বিষয়ক সংস্থা ফেসবুককে পাঁচ লক্ষ পাউন্ড জরিমানার পরিকল্পনা করে। তবে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এ জরিমানার অংক কমানোর চেষ্টা করবে কিনা সে বিষয়ে এখনো কিছু বলেনি। ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এবং ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে আসার বিষয়ে গণভোটের ফলাফল প্রভাবিত হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। তথ্য অধিকার সংরক্ষণ বিষয়ক সংস্থাটি আরো জানিয়েছে আর্থিক জরিমানার পাশাপাশি বিলুপ্ত হওয়া ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার সহযোগী সংস্থা এসসিএল ইলেকশনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করার কথাও ভাবছে। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য কিভাবে হুমকির মুখে পড়তে পারে সে সংক্রান্ত কোন ব্যাখ্যা ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তাদের ব্যবহারকারীদের কাছে ব্যাখ্যা করেনি। এর পাশাপাশি সংস্থাটি ব্রিটেনের ১১টি রাজনৈতিক দলের কাছে চিঠি দিয়েছে যাতে তারা তাদের তথ্য যথাযথভাবে সংরক্ষণ করে এবং সেটি ঠিকমতো হচ্ছে কিনা তা নিরীক্ষা করে। ব্রিটেনে ব্রেক্সিট প্রশ্নে গণভোটের সময় রাজনৈতিক প্রচারণায় জনগণের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষটি নিয়ে এখনো তদন্ত চলছে। এ তদন্ত শুরুর ১৬ মাস পরে ব্রিটেনের তথ্য কমিশনারের অফিস থেকে ফেসবুককে জরিমানার উদ্যোগ এসেছে। যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার কাছে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের যেসব ব্যক্তিগত তথ্য ছিল সেগুলো যাতে তারা মুছে ফেলে সেটি ফেসবুক নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। এতে ফেসবুকের নিয়ম-নীতির লঙ্ঘন হয়েছে বলে মনে তথ্য কমিশনারের অফিস। তবে বন্ধ হয়ে যাবার আগে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা জানিয়েছিল যে ফেসবুকের কাছ থেকে তথ্য মুছে ফেলার অনুরোধ পাবার পর তারা সব তথ্য মুছে ফেলেছে। আরো পড়ুন: ওয়াশিংটন আ��ুন নিয়ে খেলছে: রাশিয়া হিন্দুদের কাছে রিপাবলিকান পার্টির ক্ষমা প্রার্থনা সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় এই মাধ্যমটি রাজনৈতিক দলের কাছে তাদের একনিষ্ঠ কর্মী পাঠাতো। +text: মুখোশধারীরা ক্যাম্পাস চত্বরে ঢুকে এলোপাথারি মারধোর শুরু করে। এসময় তারা ছাত্র ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ঐশী ঘোষের মাথা ফাটিয়ে দেয়। হামলায় আহত হন আরও অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক। তাদেরকে গুরুতর আহত অবস্থায় অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স বা এইমস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরইমধ্যে মিসেস ঘোষের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যাতে তাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, "দেখুন আমার ওপরে কীভাবে হামলা হয়েছে। ওদের সকলের মুখ ঢাকা ছিল। দেখুন কত রক্ত পড়ছে। সাংঘাতিকভাবে মেরেছে আমাকে।" বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পুলিশ ফ্ল্যাগ মার্চ করছে। জহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে রোববার সন্ধ্যার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে। ছাত্রছাত্রীরা বেশ কয়েকমাস ধরে হোস্টেল ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে আন্দোলন চালাচ্ছেন। প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে সিংহভাগ ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা এবং রেজিস্ট্রেশন বয়কট করেছেন। অন্যদিকে হিন্দু পুনরুত্থানবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয়া স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএসের ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ বা এবিভিপি সমর্থক কিছু ছাত্র বলছেন তাদের ক্লাস করতে বা পরীক্ষা বয়কট করতে আন্দোলনকারীরা কেন বাধ্য করছে? হামলাকারীরা সবাই এই এবিভিপি-র সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে হামলাকারীদের আনা হয়েছে বলে অভিযোগ ছাত্র ইউনিয়নের। শুধু ছাত্রছাত্রীদের নয়, তাদের হামলায় শিক্ষকরাও আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওদিকে এবিভিপি-র পাল্টা অভিযোগ বামপন্থী ছাত্রছাত্রীরাই তাদের ওপরে প্রথমে হামলা চালায়। একটি সংবাদ বিবৃতিতে তারা বলেছে এসএফআই [সিপিআইএম দলের ছাত্র সংগঠন], এইএসএ [নকশালপন্থী সিপিআইএমএল লিবারেশনের ছাত্র সংগঠন] এই হামলার জন্য দায়ী। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের সামনে ব্যাপক সংখ্যায় দুই পক্ষের ছাত্রছাত্রীরা জড়ো হয়েছে। আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মুখোশ পড়া বেশ কিছু নারী-পুরুষ লাঠি হাতে এগিয়ে আসছেন। এক ছাত্রী চিৎকার করে তাদের প্রশ্ন করছেন, "এটা কী হচ্ছে! তোমরা কারা? মেয়েদের হোস���টেলে কেন ঢুকছ! আমাদের ভয় দেখাতে এসেছ?" ওই ভিডিওতেই শোনা যাচ্ছে কিছু ছাত্রী স্লোগান দিচ্ছেন, "এবিভিপি গো ব্যাক। এই ভিডিওটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে মুখোশধারী হামলাকারীদের গালিগালাজ করতে শোনা যায়। একদিকে যেমন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে মুখোমুখি দুই পক্ষ, অন্যদিকে ছাত্ররা দিল্লি পুলিশের হেডকোয়ার্টারের সামনেও জড়ো হয়েছে বড় সংখ্যায়। দুটি জমায়েতেই ব্যাপক সংখ্যায় অন্যান্য কলেজ - বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী এবং বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা জড়ো হয়েছেন। আরও পড়তে পারেন: আলিগড়ের মুসলিম ছাত্রদের কেন দেশদ্রোহী তকমা? ভারতের ক্যাম্পাসে আজাদি ঝড়ে তছনছ মুক্তচিন্তার চর্চা? ভারতের ক্যাম্পাসে আজাদি ঝড়ে তছনছ মুক্তচিন্তার চর্চা? পুলিশের কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছাত্রছাত্রীরা এই প্রশ্নও তুলছেন, যখন মুখোশধারী হামলাকারীরা ক্যাম্পাসে তাণ্ডব চালাচ্ছিল, তখন পুলিশ সেখানে হাজির ছিল। কিন্তু তারা নীরব দর্শক হয়ে ছিল বলেও অভিযোগ। দিল্লি পুলিশের কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অজ্ঞাত মুখোশধারীরা ক্যাম্পাসে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে হামলার পরে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদেরও প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে। এসবের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিক্রিয়া এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের। তিনি টুইট করেছেন, "জেএনইউ-এর ঘটনার ছবি দেখছি। স্পষ্ট ভাষায় এই হিংসার নিন্দা করছি। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে।" মি. জয়শঙ্কর এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর আর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে পিএইচডি করেছেন। রাহুল গান্ধী লিখেছেন, "শাসনক্ষমতায় থাকা ফ্যাসিবাদীরা ছাত্রদের সাহস দেখে ঘাবড়ে গেছে। আজকের হামলা তারাই প্রতিফলন।" ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর হামলার নিন্দা জানান। সিপিআইএম-এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, যিনি নিজেও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন একসময়ে, তিনি বর্তমান ছাত্র ইউনিয়ন প্রেসিডেন্ট ঐশী ঘোষের মাথা থেকে রক্ত ঝরার ভিডিওটি রি-টুইট করে লিখেছেন, "এই ভিডিও দেখেই বোঝা যাচ্ছে আরএসএস, বিজেপি দেশের কী অবস্থা করতে চাইছে। কিন্তু আমরা ওদের এটা করতে দেব না।" ছাত্রদের ওপরে হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম। ছত্তিসগড়ের রাজধানী রায়পুরে ছাত্রদের ওপরে হামলার বিরুদ্ধে মিছিল হয়েছে। আগামীকাল সকাল থেকে ভারতের অনেক জায়গাতেই প্রতিবাদ মিছিল হবে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। জহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে রোববার সন্ধ্যার দিকে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালিয়েছে ৫০ জনেরও বেশী মুখোশধারী দুষ্কৃতি। +text: আফগানিস্তানে প্রায় ১২ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। কাবুলে যুক্তরাষ্ট্র-আফগান যৌথ ঘোষণায় এই তথ্য জানা গেল। শনিবার আরো পরের দিকে তালেবানের সঙ্গে চুক্তিটি স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে। সেটি স্বাক্ষরিত হলে আফগানিস্তানে আঠারো বছর ধরে চলা সংঘাতের অবসান ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। আফগান সরকার এবং তালেবানের সঙ্গে পরবর্তীতে আলোচনা অব্যাহত থাকবে। আরো পড়ুন: আফগানিস্তানে কিভাবে ঢুকেছিল সোভিয়েত বাহিনী কাতারে মুখোমুখি আমেরিকা ও তালেবান, পরিণতি কী 'আফগানিস্তানের ৭০ শতাংশ এলাকাতেই তালেবান' আফগানিস্তানে কেনো এতো দীর্ঘ যুদ্ধ হচ্ছে? তালেবান হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি ভবন যুক্তরাষ্ট্র এবং আফগান সরকারের যৌথ ঘোষণায় বলা হয়েছে, ''যুক্তরাষ্ট্র-তালেবানের চুক্তি অনুযায়ী তালেবান যদি তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে, তাহলে আগামী ১৪ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে অবশিষ্ট সকল সৈন্য প্রত্যাহার করে নেবে যৌথবাহিনী।'' ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে আফগানিস্তান ভিত্তিক আল-কায়েদা গ্রুপ হামলার পর দেশটিতে অভিযান চালায় যুক্তরাষ্ট্র। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে ২৪০০-র বেশি মার্কিন সেনা নিহত হয়েছে। এখনো দেশটিতে প্রায় ১২ হাজার সেনা মোতায়েন রয়েছে। সংঘর্ষের অবসানের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০১১ সাল থেকে আফগানিস্তানে শান্তি নিয়ে আলোচনা করতে আসা তালেবান নেতাদের আশ্রয় দিয়েছে কাতার। ২০১৩ সালে তালেবানের একটি কার্যালয় চালু করা হয়, তবে পতাকা নিয়ে বিরোধে সেই বছরই সেটা বন্ধ করে দেয়া হয়। ২০১৮ সালে জঙ্গি বাহিনীটি ঘোষণা করে যে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে বসবে যাতে শান্তির একটি রোডম্যাপ তৈরি করা যায়। কিন্তু চরমপন্থি এই বাহিনীটি আফগান সরকারের সঙ্গে কোন আলোচনায় বসতে অস্বীকার করে, যাদের তারা আমেরিকান পুতুল বলে বর্ণনা করে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফর কি আটকানো সম্ভব? চট্টগ্রাম বিস্ফোরণ: ঢাকায় হামলার সঙ্গে সাদৃশ্য খুঁজছে পুলিশ শরণার্থী ও অভিবাসীদের ইউরোপের দিকে পাঠিয়ে দিচ্ছে তুরস্ক দিল্লিতে মুসলমান নারীদের বর্ণনায় ককটেল আর আগুনের ভয়াবহতা আফগান বাহিনীকে সহায়তা করে জোট বাহিনী কাতারে নয় দফা আলাপ-আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান একটি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বিশ সপ্তাহের মধ্যে ৫৪০০ সেনা সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান আলোচক। কিন্তু কয়েকদিন পরে তালেবানের হামলায় একজন মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার পর আলোচনাকে 'মৃত' বলে ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পর্দার আড়ালে উভয় পক্ষ আবার আলোচনা শুরু করে। এক সপ্তাহ আগে সহিংসতা কমানোর ব্যাপারে সম্মত হয় তালেবান-যদিও আফগান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, এই সময়ের মধ্যেই তাদের হামলায় ২২জন সৈনিক এবং ১৪জন বেসামরিক বাসিন্দা নিহত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং নেটো সহযোগীরা আফগানিস্তান থেকে আগামী ১৪ মাসের মধ্যে সব সৈন্য সরিয়ে নেবে যদি নতুন চুক্তি অনুযায়ী তালেবান প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। +text: করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ২য় ঢেউ শুরু হয়েছে বাংলাদেশে এরই মধ্যে চিকিৎসা এবং জরুরি সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলো। দেশের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ জেলাই ভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসে যে নতুন ধরন দ্বিতীয় ঢেউ সূচনা করেছিল বাংলাদেশেও একই ভ্যারিয়ান্টগুলোর উপস্থিতি থাকায় উদ্বেগ বেড়েছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সারাদেশে এক সপ্তাহের বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও সেটি কোনো উপকারে আসবে কিনা - তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সেটি কার্যকর করতে প্রয়োজনে স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারি করা বা কারফিউ জারি করা দরকার। ড. ফেরদৌসী কাদরী পরিস্থিতি কেন উদ্বেগের: আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ-আইসিডিডিআরবির এক তথ্যে বলা হয়েছে নতুন আক্রান্তদের ৮১ শতাংশই হলো দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়ান্ট। এছাড়া যুক্তরাজ্যে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসের নতুন ধরনটিরও উপস্থিতি আগেই নিশ্চিত হওয়া গেছে বাংলাদেশে। সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে আইসিডিডিআরবি'র এমিরেটাস বিজ্ঞানী এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভ্যাকসিন বিষয়ক বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ড. ফেরদৌসী কাদরী বলেন "আমরাতো দেখতেই পাচ্ছি ভ্যারিয়েন্টগুলো কী তাড়াতাড়ি স্প্রেড করেছে।@ "যুক্তরাজ্য থেকে আরম্ভ হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সব জায়গায় ছড়িয়ে গেছে। এগুলোর ইনফেকশন রেট হায়ার, ট্রান্সমিশন অনেক হাই তবে সিভিয়ারিটির বিষয়টা আরো গবেষণা করে বলতে হবে।" আরো পড়তে পারেন: মহামারি শুরুর পর বাংলাদেশে গত একমাসে সবচে বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া গত এক সপ্তাহে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে সাত হাজারও অতিক্রম করেছে। মৃত্যুও বেড়েছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ভাইরাসের গতিবিধি এবং দেশের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে বলছেন ২য় ওয়েভ আরো বেশি শঙ্কা এবং দুশ্চিন্তার। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বে-নজির আহমেদ বিবিসিকে বলেন, "আমাদের এখানে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া কিছু ধরন আছে। ইউকে ভ্যারিয়েন্ট নিশ্চিত আছে দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্টও আছে। বাংলাদেশেও যে ধরনটা আগে ছিল সেটাও মনে হচ্ছে তাতে মিউটেশন হয়ে আগের চেয়ে বেশি মারাত্মক সংক্রমণ করা মৃত্যু বেশি হওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে"। বিধিনিষেধ থাকলেও বাজারঘাটে মানুষের সমাগম অনেকটা আগের মতোই সরকারি হিসেবে এপ্রিল মাসে প্রায় প্রতিদিনই অর্ধশতাধিক মানুষ কোভিড১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। মহামারি শুরুর পর বৃহস্পতিবার ৮ই এপ্রিল একদিনে সর্বোচ্চ ৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন প্রায় সব হাসপাতালের আইসিইউ বেড ভেন্টিলেটর রোগীতে ভরে গেছে, অক্সিজেন সুবিধাসহ বেড খালি না থাকায় সংকটাপণ্ন রোগীদের নিয়ে স্বজনদের ভোগান্তি শুরু হয়ে গেছে বলেই স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোয় খবর হচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ভিন্ন অভিজ্ঞতা সম্মুখীন হচ্ছেন চিকিৎসকরা। বাংলাদেশ পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশনের কোষাধক্ষ্য এবং বাংলাদেশ ���েডিকেল কলেজের ফার্মাকোলজির বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শর্মিলা হুদা বলেন- "আগে যেরকম হাসপাতালে ভর্তি হবার পর অন্তত দশদিন আমাদের হাতে সময় থাকতো। যখন নাকি কেউ একজন আক্রান্ত হতো তখন আমরা কিছুটা সময় পেতাম। এখন যে ওয়েভটা চলছে সেখানে দেখা যাচ্ছে আমরা সেই সময়টা পাচ্ছি না।" সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে করণীয়: ২য় ঢেউয়ের সংক্রমণের উর্ধ্বগতি ঠেকাতে এক সপ্তাহের জন্য বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু মহামারি নিয়ন্ত্রণে বিজ্ঞানভিত্তিক লকডাউন নূন্যতম ১৪দিন হতে হয়। আবার যেভাবে বিধিনিষেধ পালিত হচ্ছে তাতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ কতটা সম্ভব হবে সে প্রশ্ন উঠেছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বোচ্চ কঠোর হবার তাগিদ দিচ্ছেন। বে-নজির আহমেদ বলেন "আমার মত হলো একটা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা দরকার। স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা। এ জরুরি অবস্থার আওতায় খুব ক্ষিপ্রতার সাথে সবদিক থেকে যদি ম্যানেজ করা যায় তাহলেই একটা সমাধান হতে পারে।" এদিকে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে বিধিনিষেধ মানার ক্ষেত্রে মারাত্মক অনীহা দেখা গেছে। জোরালো দাবির মুখে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার সুযোগ এবং গণপরিবহণ চালু করা হয়েছে। 'লকডাউন' মুখে বলা হলেও সরকারি প্রজ্ঞাপনে 'লকডাউন' শব্দটি পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়নি। আর বিধিনিষেধ মেনে চলার জন্য অভিযান পরিচালনার কারণে সরকারি অফিসে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে শর্মিলা হুদা বলছেন, "কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে কেউ বাইরে না যায়। আমার কাছে মনে হয়, যে কারফিউ ছাড়া আসলে বাংলাদেশের মানুষজনকে ঘরে রাখা সম্ভব না"। ২য় ঢেউ ঠেকাতে ভ্যাকসিন: এদিকে করোনা ভাইরাসের মহামারি ঠেকাতে বড় জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনাটা গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। বাংলাদেশে এরই মধ্যে টিকার ২য় ডোজের প্রয়োগ শুরু হয়েছে। ৭ই ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিক টিকা কর্মসূচী শুরুর পর এপর্যন্ত ৫৫ লাখের বেশি মানুষ প্রথম ডোজের টিকা গ্রহণ করেছে। এই মহামারি মোকাবেলায় টিকাদান কর্মসূচী খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু টিকা নিয়েও রয়েছে চ্যালেঞ্জ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভ্যাকসিন বিষয়ক বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ড. ফেরদৌসী কাদরী মনে করেন বিশ্বের অনেক দেশের আগে বাংলাদেশ টিকা কার্যক্রম শুরু করেছে তবে এ ব্য���পারে আরো তৎপরতা প্রয়োজন। সরকারি বিধিনিষেধে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও চালু আছে মহানগরীর গণপরিবহন "ভ্যাকসিনের অভাবটা কিন্তু পৃথিবী জুড়ে। এটা শুধু বাংলাদেশে না। তারপরেও আমরা কিনে এনেছি, গিফট পেয়েছি এবং কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিতে পাব। তিনটা মাধ্যমে পাচ্ছি। কিন্তু এরপরও আমাদের বসে থাকার সুযোগ নেই, যেসব আছে আমাদের। আমাদেরকে টিকার জন্য আরো চেষ্টা করতেই হবে।" করোনা ভাইরাস মহামারি মোকাবেলায় টিকার উৎপাদনের সক্ষমতা কাজে লাগানো দরকার বলে মনে করেন ফেরদৌসী কাদরী। বাংলাদেশে বেশ কিছু ওষুধ কোম্পানির উৎপাদন সক্ষমতা আছে যা কাজে লাগানোর মোক্ষম সময় এটি। "আমাদের সক্ষমতা আছে, নো-হাউ আছে, এক্সপার্টিজ আছে। সবই আছে। আমার মনে হয় আমাদের আরেকটু চেষ্টা করতে হবে যে কীভাবে আমরা আনবো বাংলাদেশে। কীভাবে জোর করে আনবো বাংলাদেশে"। এদিকে টিকা প্রয়োগের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ দেশই একাধিক ভ্যাকসিনকে তাদের কর্মসূচীর আওতায় রেখেছে। তবে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত একমাত্র অক্সফোর্ডের টিকার ওপর নির্ভর করেই এগুতে দেখা যাচ্ছে। একটি টিকার ওপর নির্ভরশীলতা ঝূঁকিপূর্ণ বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। বে-নজির আহমেদ বলেন, "আমাদের উচিৎ ছিল প্রথম থেকেই তিন-চারটা ভ্যাকসিন নিয়ে এগোনো যাতে করে আমাদের হাতে অপশনগুলো বেশি থাকতো। একটা ভ্যাকসিন না হলে আরেকটা ভ্যাকসিনের জন্য আমরা চেষ্টা করতে পারতাম।" বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: সিলেট জেলার সব থানায় বসছে মেশিনগান পাহারা করোনাভাইরাস: দক্ষিণ আফ্রিকার ভয়াবহ ধরন নিয়ন্ত্রণ হবে কিভাবে দূতাবাস থেকে বের করে দেওয়ার পর লন্ডনের রাস্তায় রাত কাটালেন মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। লকডাউন বা বিধিনিষেধ আরোপের পরেও সংক্রমণ, মৃত্যুহার উর্ধ্বমূখী থাকায় সংকট আরো বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। +text: মোক্সি নামের যন্ত্রটি আকারে একটি টোস্টারের সমান নাসার এই মঙ্গল অভিযানে এটি এ ধরণের দ্বিতীয় প্রযুক্তিগত সাফল্য। এর আগে পারসিভেয়ারেন্স থেকে একটি মিনি হেলিকপ্টার উড়েছিল মঙ্গল গ্রহের ওপর। যে যন্ত্রটি দিয়ে মঙ্গলগ্রহে অক্সিজেন তৈরি করা হয়েছে, সেটি আকারে একটা পাউরুটি সেঁকার টোস্টারের সমান। এটির নাম 'মার্স অক্��িজেন ইন-সিটু রিসোর্স ইউটিলাইজেশন এক্সপেরিমেন্ট' বা সংক্ষেপে মোক্সি। এই যন্ত্রটি পাঁচ গ্রাম গ্যাস তৈরি করেছে- যা দিয়ে মঙ্গলগ্রহে একজন নভোচারী বড়জোর দশ মিনিট শ্বাস নিতে পারবেন। নাসা মনে করছে, ভবিষ্যতে মঙ্গলগ্রহে মানুষের অভিযানের সময় তাদের পুরোটা সময়ের জন্য যে অক্সিজেনের দরকার হবে তা পৃথিবী থেকে বহন করে নেয়ার পরিবর্তে মোক্সি নামের এই যন্ত্রটিরই আরও বড় কোন সংস্করণ সাথে নেয়া যেতে পারে। মহাকাশে যেতে যে রকেট ব্যবহৃত হয়, সেই রকেট চালানোর জন্যও অক্সিজেন লাগে। অক্সিডাইজারের উপস্থিতিতে জ্বালানি পুড়িয়ে রকেট সামনে অগ্রসর হওয়ার গতি অর্জন করে। ‌এই অক্সিডাইজার হিসেবে সাধারণ অক্সিজেনও ব্যবহার করা যায়। গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পারসিভেয়ারেন্স রোভার মঙ্গলগ্রহে গিয়ে নামে মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডই বেশি, প্রায় ৯৬ শতাংশ। অক্সিজেন আছে মাত্র শূন্য দশমিক ১৩ শতাংশ। অথচ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আছে ২১ শতাংশ অক্সিজেন। মোক্সি নামের যন্ত্রটি মঙ্গলের কার্বন ডাইঅক্সাইডের অণু থেকে অক্সিজেন বের করতে পারে। কার্বন ডাইঅক্সাইডের প্রতিটি অণুতে থাকে কার্বনের একটি এবং অক্সিজেনের দুটি পরমাণু। আর এই অক্সিজেন বের করে নেয়ার পর যে কার্বন মনোক্সাইড অবশেষ হিসেবে থেকে যায়, তা ছেড়ে দেয়া হয় মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডলে। নাসার যে টিম মোক্সি যন্ত্রটি চালাচ্ছে, তারা বিভিন্নভাবে এটি পরীক্ষা করে দেখছে কিভাবে সবচেয়ে ভালোভাবে কাজে লাগানো যায়। তাদের প্রত্যাশা হচ্ছে, এটি দিয়ে প্রতি ঘণ্টায় দশ গ্রাম পর্যন্ত অক্সিজেন উৎপাদন করা যাবে। আরও পড়ুন: মঙ্গলগ্রহের আকাশে সফলভাবে ড্রোন উড়িয়ে ইতিহাস ছবি: মঙ্গল গ্রহ দেখতে কেমন মঙ্গল গ্রহে নাটকীয় অবতরণের পর এখন যেসব অনুসন্ধান চালাবে নাসার নভোযান নাসার স্পেস টেকনোলজি মিশন ডাইরেক্টরেটের টেকনোলজি বিষয়ক পরিচালক ট্রাডি কোর্টেস বলেন, "মোক্সি যে ভিনগ্রহে অক্সিজেন উৎপাদনকারী প্রথম যন্ত্র কেবল তাই নয়, এটি হচ্ছে এ ধরণের প্রথম প্রযুক্তি যা ভবিষ্যতের অভিযানগুলোকে ভিন্ন কোন গ্রহে সেখানকার পরিবেশের উপাদান ব্যবহার করেই বেঁচে থাকতে সহায়তা করবে।" মঙ্গলগ্রহের যেখানে গিয়ে অবতরণ করেছে পারসিভেয়ারেন্স রোভার নাসা তার ইনজেনুইটি হেলিকপ্টারটি আজ আবার ওড়ানোর চেষ্টা করবে। গত সপ্তাহে এই ���িনি হেলিকপ্টার মঙ্গলগ্রহে ওড়ার মাধ্যমে ইতিহাস সৃষ্টি করে। ভিন্ন কোন গ্রহে কোন বিদ্যুৎচালিত উড়ন্তযানের এটাই ছিল প্রথম কোন নিয়ন্ত্রিত ফ্লাইট। দ্বিতীয় ফ্লাইটের সময় এটি মঙ্গলের পৃষ্ঠদেশ থেকে পাঁচ মিটার ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে। এটি এসময় কিছু ছবি তুলবে, এরপর যেখান থেকে উড়েছিল, সেই জায়গায় ফিরে মাটিতে নামবে। নাসা মঙ্গলগ্রহে পারসিভেয়ারেন্স রোভার বলে যে মহাকাশযান পাঠিয়েছে, সেটির একটি ছোট্ট যন্ত্র মঙ্গলের কার্বন ডাই অক্সাইড ব্যবহার করে তা থেকে অক্সিজেন তৈরি করেছে। +text: যেসব মায়েরা গর্ভাবস্থায় মদ্যপান করেন তাদের সন্তানদের মধ্যে এই রোগ দেখা দেয়ার সম্ভাবনা বেশি। আর দেশটির ওয়েস্টার্ন কেপ এলাকায় অভাব আর বেকারত্বের শিকার বেশিরভাগ দম্পতির মধ্যে মদ্যপানের সংস্কৃতি একটি দেখা যায়। এই ধরনের সিনড্রোম নিয়ে জন্ম নেয়া শিশুদের প্রায়ই মস্তিস্কের ক্ষতি এবং বেড়ে ওঠার সময় বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। কোনও কোনও সম্প্রদায়ের মাঝে ভ্রুণের এই অ্যালকোহল সিনড্রোম এত মারাত্মক রূপ নেয় যে, তা এইচআইভির চেয়েও ভয়াবহ। কেপটাউনের সমুদ্র উপকূলবর্তী গ্রাম ভ্রেডেনবার্গের এক হাজার শিশুর মধ্যে ৬৫ জন শিশু ভ্রুনের অ্যালকোহল সিনড্রোম সমস্যায় ভুগছে। চার সন্তানের মা ৩২ বছর বয়সী ম্যারির দশ বছর বয়সী মেয়ের মধ্যে এই সমস্যা প্রথম প্রকাশ পায় যখন সে স্কেুলে যেতে শুরু করে। "সে যখন একেবারে ছোট ছিল তখন প্রচুর কান্নাকাটি করতো। এরপর যখন একটু বড় হতে শুরু করলো তখন সে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে হাসতে থাকতো। সে খুবই ভুলোমনা। কিন্তু আমার দুই বছর বয়সী আরেকটি শিশুরও এই সমস্যা আছে বলে সন্দেহ হচ্ছে"-বলছিলেন ম্যারি। ম্যারি স্বীকার করেন, সন্তান গর্ভে থাকাকালীন সে প্রচুর মদ্যপান করতো। "আমি যখন গর্ভবতী ছিলাম সে সময় বাচ্চাদের বাবার দ্বারা খুব নির্যাতনের শিকার হতাম। আমি জানতাম না যে, মদ্যপান করলে আমার বাচ্চাদের ব্রেনের স্থায়ী ক্ষতি হবে। নিজের কষ্ট ভুলে থাকার জন্য আমি মদ্যপান করতাম আর মাদক নিতাম। তখন আমি মদ পান করতাম বাচ্চাদের বাবার সাথেই। কিন্তু এখন দায়-দায়িত্ব বহন করতে হচ্ছে আমাকে একাই"। বিশ্বের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায় এই হার সর্বোচ্চ। এই অঞ্চলে ম্যারির ঘটনার মত আরও বহু ঘটনা রয়েছে। অনেক সম্প্রদায়ে ১৩ শতাংশের বেশি শিশুর জন্মানোর সময় ���র প্রভাব দেখা যায়। অ্যালকোহল সম্পর্কিত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের একজন গবেষক লিওনা অলিভিয়ের বলেন, "যেসব গর্ভবর্তী নারীরা অ্যালকোহল খান তারা অনেক ক্ষেত্রেই এই সমস্যায় আক্রান্ত শিশুদের জন্ম দিচ্ছেন। এই সমস্যা কখনো খুব বেশি আবার কখনো সামান্য হতে পারে। এটি মস্তিস্কের অপরিবর্তনযোগ্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। বিশ্বের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায় এই হার সর্বোচ্চ। কোনও কোন সম্প্রদায়ের মাঝে এর প্রাদুর্ভাবের হার এইচআইভির চেয়েও বেশি"। হাজার হাজার শিশুর এবং তাদের পরিবারের জন্য এই রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা ভয়ানক অভিজ্ঞতা। কিন্তু সঠিক পরিচর্যা বা সহায়তা পেলে এই শিশুরাও অপেক্ষাকৃত স্বাভাবিক জীবন কাটাতে পারে। ভিভিয়ান লরেন্স ষোল বছর ধরে একশোর বেশি শিশুকে প্রতিপালন করেছেন। তাদের বেশিরভাগেরই অ্যালকোহল সিনড্রোম ছিল। এরকম দুটো শিশুকে তিনি দত্তক নিয়েছেন। মিসেস লরেন্সের এই দুজন পালিত সন্তানের একজন তিমা। এখন তার বয়স ২০ বছর। মিসেস লরেন্স স্থানীয় একটি কাপ কেক তৈরির কোম্পানিকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন লরাকে কাজে লাগানোর জন্য। এখন সেখানেই সে কাজ করছে। নারীদের অ্যালকোহল পানের ক্ষতিকর দিক নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি চলছে। কিন্তু ভ্রুণের অ্যালকোহল সিনড্রোম সমস্যাটি দূর করা যে এখনও একটি বড় চ্যালেঞ্জ, সরকারও তা স্বীকার করছে। ভ্রুণের মধ্যে অ্যালকোহল সিনড্রোম-বিশ্বের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার শিশুদের মধ্যে এই হার সবচেয়ে বেশি বলে দেখা গেছে। +text: ব্রিটেনের একজন অপরাধ বিজ্ঞানী বলেছেন, যেসব পুরুষ তাদের সঙ্গীকে হত্যা করে তারা হত্যাকাণ্ডের একটি টাইমলাইন অনুসরণ করে, যেটি অনুসন্ধানের মাধ্যমে পুলিশ এসব হত্যাকাণ্ড রুখতে পারে। মঙ্কটন স্মিথ ব্রিটেনে ৩৭২টি হত্যাকাণ্ডের উপর গবেষণা করে দেখেছেন যে এসব ক্ষেত্রে আটটি ধাপ অনুসরণ করা হয়েছে। গ্লস্টারশায়ার ইউনিভার্সিটির এই শিক্ষক বলেন, অনেকের আচরণ দেখ বোঝা যায়, সে ব্যক্তি তার সঙ্গীকে হত্যা করতে পারে। হত্যাকাণ্ডের শিকার একজনের বাবা বলেছেন, এ ধরণের বিষয়গুলো চিহ্নিত করা গেলে 'জীবন রক্ষা' করা সম্ভব। মিজ স্মিথ বলেন, সঙ্গীদের দ্বারা যারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন তাদের প্রায় ৮০ শতাংশ নারী। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডে যে আটটি ধাপ লক্ষ্য করা গেছে . সম্পর্কের আগে উত্যক্ত করার ইতিহাস আছে . প্রেম খুব দ্রুত সিরিয়াস সম্পর্কে রূপ নেয়া . সম্পর্কের ক্ষেত্রে কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে ওঠা . সম্পর্ক শেষ হয়ে যায় এবং হামলাকারী আর্থিক সংকটে পতিত হয় . সঙ্গীর ব্যবহারে আত্মহত্যার হুমকি দেবার প্রবণতা বাড়ে . হামলাকারীর চিন্তায় পরিবর্তন আসে। সে তখন প্রতিশোধ নেবার জন্য এগিয়ে যায় . হামালাকারী অস্ত্র ক্রয় করতে পারে এবং তার সঙ্গীকে একা পাওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকে . পুরুষটি তাঁর সঙ্গীকে হত্যা করে এবং তাঁর সন্তানকেও আহত করার সম্ভাবনা থাকে ২০১৬ সালে অ্যালিসকে তার প্রাক্তন ছেলে বন্ধু হত্যা করে। "আপনি যদি এসব ঘটনার দিকে তাকান, তাহলে সেখানে দেখবেন পরিকল্পনা, প্রতিজ্ঞা এবং সবসময় সঙ্গীকে নিয়ন্ত্রণ করার বিষয় থাকে।" হত্যাকাণ্ডের শিকার ২৪ বছর বয়সী অ্যালিস-এর বাবা এই গবেষণার প্রেক্ষাপটে বলেন, মিস স্মিথ-এর গবেষণায় যে আটটি ধাপের কথা বলা হয়েছে সেগুলো যদি পুলিশ আগে জানতো তাহলে পরিস্থিতি হয়তো ভিন্নরকম হতে পারতো। অ্যালিসের সাথে তাঁর ছেলে বন্ধুর গভীর সম্পর্ক ভেঙ্গে যাবার পর সে অ্যালিসকে উত্যক্ত করতো এবং এক পর্যায়ে ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে তাকে হত্যা করে। অ্যালিস-এর বাবা ক্লাইভ বলেন, " তার (অ্যালিসের প্রাক্তন ছেলে বন্ধুর) উত্যক্ত এবং অন্যকে নিয়ন্ত্রণ করার ইতিহাস ছিল - এসব সতর্কবার্তা আগেই ছিল।" "এই আটটি ধাপ সম্পর্কে পুলিশ যদি জানতো, তাহলে তারা অনুধাবন করতে পারতো - ক্রমাগত মেসেজ পাঠানো, মানসিকভাবে জিম্মি করাসহ নানা ধরণের বিষয়। এটা পরিষ্কার যে সে তখন পাঁচ নম্বর স্তরে ছিল," বলছিলেন মি: ক্লাইভ। " আমরা বিশ্বাস করি যে এই মডেল সম্পর্কে যদি সবাই জানে এবং সেটি অনুযায়ী কাজ করে তাহলে এটি পরিস্থিতি উন্নতি ঘটাবে এবং জীবন রক্ষা করবে।" মঙ্কটন স্মিথ মনে করেন তার আবিষ্কৃত আটটি ধাপ পর্যবেক্ষন করলে হত্যাকাণ্ড কমানো যাবে। মিজ স্মিথ তাঁর মডেল সম্পর্কে ব্রিটেনের আইনজীবী, মনোবিজ্ঞানী এবং পুলিশকে শিখিয়েছেন। তার এই গবেষণা নারীর প্রতি সহিংসতা বিষয়ক একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এবং আরো বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। "তারা যখন এটি দেখবে, তখন তারা বলবে, ' আমি তৃতীয় স্তরের একটি ঘটনা পেয়েছে।' অথবা 'আমার সম্পর্ক পাঁচ নম্বর স্তরে পৌঁছে গেছে'," বলছিলেন মিজ স্মিথ। তিনি বলেন, পুলিশ এই নতুন গবেষণাটিকে বেশ ভালোভাবে গ্রহণ করেছে। মিজ স্মিথ জানান, পুলিশ যদি একবার আটটি ধাপ সম্পর্কে জানে তাহলে তারা সম্ভাব্য হামলাকারী সম্পর্কে খোঁজ-খবর রাখতে পারবে। এছাড়া ভিকটিমরাও বুঝতে পারবে যে তারা কোন অবস্থার মধ্যে আছে এবং সে বিষয়টি অন্যদের জানাতে পারবে। তিনি বলেন, ভিকটিম কিভাবে একটি কর্তৃত্ব-পরায়ণ সম্পর্ক থেকে নিরাপদে বের হয়ে আসতে পারে সে সম্পর্কে আরো গবেষণা করার প্রয়োজন আছে। এছাড়া একটি গভীর সম্পর্কের ক্ষেত্রে মানুষ কেন কর্তৃত্ব-পরায়ণ হয়ে উঠে এ বিষয়টিও আরো গবেষণার মাধ্যমে বের করে আনতে হবে। ২০১৭ সালে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩০ হাজার নারী তাদের বর্তমান অথবা সাবেক সঙ্গীদের দ্বারা খুন হয়েছে। +text: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে গত কয়েকদিন ধরে। তিনি দাবি করছেন, যে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে সেখানে তিনি নিজে উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে এটি আন্দোলনকে উস্কে দেয়ার চেষ্টা বলে দাবি করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য খোন্দকার মোঃ নাসিরউদ্দীন। মোঃ হুমায়ুন কবির বলছেন, "উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়ার পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা যাতে ভেতরে আসতে না পারে সেজন্য প্রশাসন থেকে সিদ্ধান্ত হয় যে যারাই ভেতরে আসবে, তাদের যে কোন মূল্যে ফেরাতে হবে। সেটা করতে গিয়ে দা, লাঠি, যত ধরনের দেশি অস্ত্র আছে সেগুলো দিয়ে আমাদের স্টুডেন্টদের মেরে বিলের মধ্যে, রাস্তায় ফেলে রাখা হয়। আপনারা নিশ্চয়ই পত্রিকায় ছবি দেখেছেন।" তিনি বলেন, "আমিতো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনেই ছিলাম। যখন বৈঠকটা হয় তখন আমি তার প্রতিবাদ করেছি যে এরকম সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না। তারা আমার কথা মানে নাই। যে কারণে আমার পদত্যাগ।" গোপালগঞ্জের এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এখন উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ চলছে। আইন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং একই সাথে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি দৈনিকের সাংবাদিক ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে ফেসবুকে একটি পোষ্ট দেয়ার জন্য বহিষ্কারের জের ধরে শুরু হওয়া আন্দোলন গত দুদিনে আরও জোরালো হয়েছে। এখন যুক্ত হয়েছে নানা ধরনের পুরনো ক্ষোভ নিয়ে দাবিদাওয়া ও উপাচার্যের বিরুদ্ধে আড়াই কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস আরো পড়তে পারেন: গোপালগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে বহিষ্কার নিয়ে তোলপাড় ঢাবিতে 'টাকলু' বলে ���হিষ্কার: কী ছিল সেই 'অসদাচারণ' বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট দেড় হাজার কোটি টাকা দিয়ে কী তৈরি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শনিবারই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর বহিরাগতদের হামলার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রোক্টর তার প্রতিবাদে পদত্যাগ করলে বিষয়টি নতুন মোড় নেয়। মোঃ হুমায়ুন কবির বলছেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টরের কাজ হল শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়া। সেই নিরাপত্তা দিতে আমি ব্যর্থ হয়েছি। আমার শিক্ষার্থীরা আমার সন্তান সমতুল্য। এই অবস্থায় আমি নৈতিকভাবে এই পদে থাকতে পারি না।" সহকারী প্রোক্টরের পদ থেকে পদত্যাগ করলেও মি. কবির বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হিসেবে বহাল আছেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন, ভেটেরিনারি মেডিসিনের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সুমাইয়ার রশীদ বলছেন, "শুরু থেকে আমাদের একটাই দাবি যে আমরা ভিসির পদত্যাগ চাই। তিনি শিক্ষার্থীদের সাথে যে অন্যায় আচরণ করে এসেছেন, এছাড়া বিভিন্ন সময়ে উনি ফেসবুকে লেখালেখি বা তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করেছেন। তার প্রতিবাদে আমরা এই দাবিটা নিয়ে এসেছি।" বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্রী তন্বী সাহা বলছেন, "শুধু যে জিনিয়াকে বহিষ্কারের জন্য এই আন্দোলন হচ্ছে সেটা নয়। বহিষ্কার এর আগেও হয়েছে যেগুলো ধামাচাপা পরে গেছে। অনেকের বাবা মাকে অপমান করা হয়েছে। আমরা সবার জন্য আন্দোলন করছি। আন্দোলন দমানোর জন্য আমাদের সহপাঠীদের বাইরের সন্ত্রাসীদের দ্বারা পেটানো হয়েছে।" শিক্ষার্থীদের উপর হামলার আদেশ দিয়েছেন এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক খোন্দকার মোঃ নাসিরউদ্দীন। তিনি বলেছেন, "এটার প্রশ্নই আসে না। এর কোন ডকুমেন্ট, প্রমাণ সে (মোঃ. হুমায়ুন কবির) কী দেখাতে পারবে?" তিনি আরও বলছেন, "দুই কিলোমিটার দূরে হয়েছে ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরেও না। কোনভাবে আমার উপর দোষ চাপানো অন্যায়। কারা যে করেছে সেটা আমার জানার কোন প্রশ্নই আসে না।" এটি আন্দোলনকে উস্কে দেয়ার চেষ্টা হতে পারে বলে উল্লেখ করে তিনি বলছেন, "এটা হয়তো স্যাবোটাজ। কারণ ওই সময় কিন্তু দ্বিতীয় দিনে আন্দোলনটা অনেকটা স্তিমিত-ভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। এটা করাতে তারপর দেখা গেলো আবার ওরা চাঙ্গা হয়ে গেছে।" আরো পড়তে পারেন: বিশ্���ের যে পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় ভিন্ন কিছু কারণে বিখ্যাত মতিঝিলের চারটি ক্লাবে অভিযান, জুয়ার সামগ্রী জব্দ ক্লাব থেকে যেকারণে খেলা বিদায় নিল, অপরাধ ঢুকলো বাংলাদেশের গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর বহিরাগতদের হামলার আদেশ সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে এসেছে বলে অভিযোগ করছেন সদ্য পদত্যাগ করা সহকারী প্রোক্টর মোঃ হুমায়ুন কবির। +text: তৌহিদুল ইসলাম গার্লস হাই স্কুল ইংল্যান্ডের সেরা স্কুল। আর সেরা স্কুলের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে থাকা স্কুলটিও একই শহরে। আর দুটি স্কুলই পরিচালনা করে তৌহিদুল ইসলাম নামে একটি শিক্ষা ট্রাস্ট। তৌহিদুল ইসলাম গার্লস হাই স্কুলের প্রায় সব ছাত্রী মুসলমান। এদের বেশিরভাগই হিজাব পরিধান করেন। কিন্তু হিজাব সম্পর্কে ব্রিটেনের মানুষের যেসব ভুল ধারণা রয়েছে সেটা ভেঙে দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে এই স্কুলের ছাত্রীরা মনে করে। তৌহিদুল ইসলাম গার্লস হাই স্কুলের জিসিএসি (ও-লেভেল) এবং এ-লেভেল পরীক্ষার ফলাফল চমকে দেয়ার মতো। ভর্তির জন্য কোন পরীক্ষা নেয়া হয় না, এবং দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ভর্তির ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। এই স্কুলের একজন ছাত্রী আলিয়া। সে বলছে, তার বাবা কোনদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌকাঠ পেরুতে পারেননি। কিন্তু তিনি এখন খুবই গর্বিত যে আলিয়ার বড় বোন এখন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাক্তারি পড়ছেন। তৌহিদুল ইসলাম স্কুলের ছাত্রীরা পড়াশুনার পাশাপাশি নানা ধরনের সমাজ সেবার সাথেও জড়িত। এই স্কুলের হেডমাস্টারের নাম লুকমান হোসেন। তিনি বলছেন, তাদের স্কুলের লক্ষ্য হচ্ছে দরিদ্র ছাত্রীদের জন্য সবচেয়ে ভাল সুযোগ তৈরি করে দেয়া। "আমাদের সমাজে অনেক বৈষম্য রয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, এই বৈষম্য জয় করে কেউ কি এগিয়ে যেতে পারেন?" বলছেন তিনি, "এটা দূর করার সবচেয়ে ভাল পন্থা হচ্ছে মানসম্পন্ন শিক্ষা।" ব্ল্যাকবার্ন শহরের একটা অখ্যাতি রয়েছে যে এই শহরে বিভিন্ন জনগোষ্ঠী একে অপরের থেকে দূরে সরে থাকে। "সবার ধারণা যে কমিউনিটিগুলো মধ্যে যোগাযোগ নেই," বলছে আরেক ছাত্রী উমাইরা, "কিন্তু তারা স্কুলে এসে অবাক হয়ে যান।" সে বলছে, তার স্কুল বিভিন্ন ধর্মীয় সংস্থা, সামাজিক সংগঠন এবং নানা ধরনের সমাজসেবা���ূলক প্রকল্পের সাথে গভীরভাবে জড়িত। ধর্ম-ভিত্তিক শিক্ষার জন্য তাদের মন ছোট এবং দৃষ্টিভঙ্গি উদার নয় বলে যে অভিযোগ রয়েছে, উমাইরা সেটি উড়িয়ে দেয়। সে বলে, তার ধর্মের সাথে অন্য কোন কিছুর সংঘাত নেই। "আমি মুসলিম, আমি নারী, এবং আমি উত্তর ইংল্যান্ডের মানুষ -- এই তিন পরিচয় একে অপরের পরিপূরক।" তৌহিদুল ইসলাম বয়েজ হাই স্কুলের ক'জন ছাত্র। এই স্কুল থেকে প্রায় এক মাইল দূরে তৌহিদুল ইসলাম বয়েজ হাই স্কুল। ইংল্যান্ডের সেরা সেকেন্ডারি স্কুলের তালিকায় এর অবস্থান তৃতীয়। পড়াশুনায় ভাল করার পাশাপাশি এখানকার ছাত্ররা নানা ধরনের সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথেও জড়িত। ব্রিটেনের সরকার এখন এমন কিছু নীতিমালা হাতে নিয়েছে যার ফলে ধর্ম-ভিত্তিক 'ফেইথ স্কুলের' সংখ্যা ভবিষ্যতে বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। গত বছর পাওয়া এক সরকারি তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, ব্রিটেনে মোট ৬,৮০০টি সরকার অনুমোদিত 'ফেইথ স্কুল' রয়েছে। কিন্তু তার মধ্যে মাত্র ২৭টি স্কুল মুসলমানদের। ইংল্যান্ডের সেরা সেকেন্ডারি স্কুলটির অবস্থান উত্তরাঞ্চলীয় শহর ব্ল্যাকবার্নে। +text: মংডুর একটি মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামে গত অক্টোবর মাসে অগ্নিসংযোগের পর.. আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের অবস্থাকে নরকের সঙ্গে তুলনা করে বলছেন, সেখানে গত প্রায় দেড় মাস ধরে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে কমপক্ষে সাড়ে তিনশো জন নিহত হয়েছে। লন্ডন থেকে মি. ইসলাম টেলিফোনে বিবিসিকে বলেছেন, সেখানে এমন অত্যাচার চলছে যা ভাষায় বর্ণনা করা সম্ভব নয়। তিনি জানান, অক্টোবরের ৯ তারিখ থেকে তাদের হিসেবে কমপক্ষে সাড়ে তিনশো জন নিহত হয়েছেন বলে তারা ধারণা করছেন। "এছাড়াও বহু নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। সাড়ে তিন হাজার বাড়িঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘরবাড়ি হারিয়েছেন ত্রিশ হাজারেরও বেশি মানুষ," বলেন তিনি। তবে নিরপেক্ষ কোন সূত্র থেকে এসব দাবির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। কোন সাংবাদিককেই মিয়ানমার সরকার সহিংসতা কবলিত রাখাইন রাজ্যে যেতে দিচ্ছে না। তবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বলছে, তাদের অভিযানে ৬৯ জন নিহত হয়েছে। রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে এবিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নূরুল ইসলাম সেনাবাহিনীকে মিথ্যাবাদী উল্লেখ করে বলেছেন, এসব তথ্য কোনভাবেই বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে না। "কারণ আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক কিম্বা সাংবাদিকদের সেখানে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।" তিনি জানান, রাখাইন রাজ্যে স্থানীয় রোহিঙ্গাদের সাথে তাদের যোগাযোগ রয়েছে। এবং সেখানকার লোকজনের সাথে কথাবার্তার ভিত্তিতে তারা যেসব খবর পাচ্ছেন সেই চিত্রটা আরো অনেক বেশি ভয়াবহ। তিনি বলেন, সবচে খারাপ অবস্থা উত্তর আরাকান এবং মংডু টাউনশীপে। মি. ইসলাম বলেছেন, "বিভিন্ন পাড়ার বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তারা তল্লাশি চালাচ্ছে। লোকজনকে গুলি করে মেরে ফেলছে। ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে লোকজন যখন বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে তখন হেলিকপ্টার গানশিপ থেকে গুলিবর্ষণ করে তাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে।" "রোহিঙ্গারা যেখানে গিয়ে লুকাচ্ছে সেখানে, রাস্তা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় পথেঘাটে, খালে নদীতে তাদেরকে মেশিনগান দিয়ে গুলি করে মেরে ফেলা হচ্ছে।" তিনি বলেন, লোকজন নৌকায় করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে চাইলে তাদের নৌকার ওপর গুলি করা হচ্ছে। রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপক অভিযান চালাচ্ছে এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করায় তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, যাদের নিরাপত্তা নেই তাদেরকে বাংলাদেশের আশ্রয় দেওয়া উচিত। "আমাদের ওপর যে নির্যাতন চলছে তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়ছে। বাংলাদেশের উচিত তাদের জন্যে সীমান্ত খুলে দেওয়া। না হলে এই লোকগুলো যাবে কোথায়?" প্রশ্ন করেন তিনি। "মনে করুন, আপনার ঘরে যদি আগুন জ্বলে তখন প্রতিবেশীর বাড়িতে আপনার আশ্রয় নিতে হবে। এজন্যে আপনাকে তো কোন অনুমতি নিতে হবে না।" বার্মা সরকারের কাছে তিনি আবেদন জানান বেসামরিক লোকজনের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর এই অভিযান এখনই বন্ধ করতে, সাংবাদিকদের আক্রান্ত এলাকায় যাওয়ার অনুমতি দিতে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের সব ঘটনা বন্ধ করতে। বাংলাদেশে অনেকের আশঙ্কা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হলে বাংলাদেশে ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গ্রুপের সৃষ্টি হতে পারে। এবিষয়ে মি. ইসলাম বলেন, এরকম কোন ভয়ের কারণ নেই। তিনি বলেন, "বাংলাদেশ সরকারের এই লোকগুলোকে আশ্রয় দেওয়া উচিত শুধুমাত্র মানবিক কারণেই।" রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসী বলে মিয়ানমার সরকার অপ্রচার চালাচ্ছে বলে তিনি দাবী করেন। "তাদের অস্তিত্ব নিয়েই এখন টানাটানির সৃষ্টি হয়েছে। কোন সহিংসতাকেই আমরা সমর্থন করি না," বলেন তিনি। রোহিঙ্গাদের লন্ডন-ভিত্তিক একটি সংগঠন রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে যাওয়া শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। +text: সৌদি আরামকো: বিশ্বের সবচেয়ে দামী কোম্পানি প্রথমে তারা বিশ্বাসই করতে চাননি যে এটা আসলেই ঘটতে যাচ্ছে। কিন্তু যুবরাজ সালমান পরবর্তী মাসগুলোতে পরিস্কার করে দিলেন যে তিনি আসলেই এটা করতে যাচ্ছেন। আজ সেই লক্ষ্যে আরেকটি বড় পদক্ষেপ নিল সৌদি আরব। বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল কোম্পানি, সৌদি আরামকো-কে একটি জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে রূপান্তরিত করা হলো। এর উদ্দেশ্য এ বছরের দ্বিতীয়ার্ধে যেন সৌদি আরামকো'র পাঁচ শতাংশ শেয়ার বাজারে বিক্রির জন্য ছাড়া যায়। সব কিছু যদি পরিকল্পনামাফিক আগায়, এটি হবে বিশ্বের শেয়ার বাজারের ইতিহাসে এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় আইপিও বা ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং। স্টক মার্কেটে আরামকোর মাত্র পাঁচ শতাংশ শেয়ার ছেড়েই সৌদি সরকার দশ হাজার কোটি ডলার পর্যন্ত (একশো বিলিয়ন ডলার) তহবিল সংগ্রহ করতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে। আরামাকো'র প্রধান নির্বাহী আমিন আল নাসের আরামকো কত বড়? সৌদি আরামকো যে শুধু বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল কোম্পানি তাই নয়, এটির পর যে কোম্পানিটি দ্বিতীয় স্থানে আছে, তার চাইতেও এটি বহুগুণ বড়। যেমন তেলের রিজার্ভের কথা ধরা যাক। সৌদি আরামকোর তেলের রিজার্ভ হচ্ছে এই মূহুর্তে ২৬১ বিলিয়ন ব্যারেল। আর দ্বিতীয় স্থানে থাকা মার্কিন কোম্পানি এক্সনের তেলের রিজার্ভ হচ্ছে ১৩ বিলিয়ন ব্যারেল। বাজার মূল্যের হিসেবেও সৌদি আরামকোর ধারে কাছে নেই কেউ। এই মূহুর্তে এই কোম্পানির বাজার মূল্য হচ্ছে দুই ট্রিলিয়ন হতে তিন ট্রিলিয়ন ডলার। (এক ট্রিলিয়ন মানে এক লাখ কোটি)। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অ্যাপলের বাজার মূল্য হচ্ছে ৮৭৬ বিলিয়ন ডলার। আর গুগলের পেরেন্ট কোম্পানি অ্যালফ্যাবেটের বাজার মূল্য ৭৫৫ বিলিয়ন ডলার। আরামকো'র শুরু যেভাবে সৌদি আরবের দাহরানে আরামকোর একটি দফতর ১৯৩৩ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বরে একদল আমেরিকান জিওলজিস্ট এসে নেমেছিল সৌদি আরবের পারস্য উপসাগর তীরের বন্দর জুবেইলে। সেখান থেকে মরুভূমির ভেতর দিয়ে শুরু হলো তাদের যাত্রা। সে বছরের জুলাই মাসেই ঘাওয়ার তেল ক্ষেত্র আবিস্কারের পর সৌদি বাদশাহ আবদুল আজিজ মার্কিন কোম্পানি স্ট্যান্ডার্ড অয়েল'কে সৌদি আরবে তেল অনুসন্ধানের অনুমতি দিয়েছেন। তার সূত্র ধরেই এই বিজ্ঞানীদের সৌদি আরবে আসা। এরপর বাকীটা ইতিহাস। সৌদি আরব সরকার আর মার্কিন কোম্পানি স্ট্যান্ডার্ড অয়েলের মধ্যে এই চুক্তির পথ ধরেই প্রতিষ্ঠিত হয় অ্যারাবিয়ান আমেরিকান অয়েল কোম্পানি (আরামকো)। সৌদি সরকারকে প্রাথমিকভাবে ৫০ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড ছাড়াও আয় অনুযায়ী অর্থ দেয়ার অঙ্গীকার করে আরামকো। আরামকো সৌদি আরবের কিছু এলাকায় তেল অনুসন্ধানের একচেটিয়া অনুমতি পায়। আরামকোর প্রকৌশলীরা জানতেন, সৌদি আরবে তেল আছে। কিন্তু কোথায়, সেটাই ছিল প্রশ্ন। ১৯৩৮ সালে দাহরানের কাছে দাম্মাম তেল ক্ষেত্র আবিস্কার করলো তারা। আরও পড়ুন: থাইল্যান্ডে পুরুষাঙ্গ 'ফর্সা' করার এই ঝোঁক কেন? গণতন্ত্রে কী প্রভাব রাখলো ৫ই জানুয়ারি নির্বাচন ২০১৭ সালে যেসব ঘটনা আলোড়ন তুলেছিল ১৯৫০ সালে সৌদি বাদশাহ আবদুল আজিজ আরামকো জাতীয়করণের হুমকি দিলে আরামকো তাদের লভ্যাংশ সৌদি সরকারের সঙ্গে আধাআধি ভাগ করতে রাজী হয়। ১৯৭৩ সালে আরব ইসরায়েল যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পক্ষ নেয়ার পর সৌদি আরব সরকার আরামকোর ২৫ শতাংশ শেয়ার নিয়ে নেয়। ১৯৭৪ সাল নাগাদ সৌদি সরকারের মালিকানা বেড়ে দাঁড়ায় ৬০ শতাংশে। আশির দশক নাগাদ পুরো কোম্পানিকেই রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নিয়ে আসে সৌদি সরকার। কেন আরামকোর শেয়ার বাজারে ১৯৫০ এর দশকে আরামকো'র কর্মীদের সন্তানদের জন্য প্রতিষ্ঠিত একটি স্কুল শেয়ার বাজারে আরামকোর শেয়ার ছাড়ার ঘটনাটিকে বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীরা এক বৈপ্লবিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে। কিন্তু সৌদি আরব কেন তাদের সবচেয়ে মূল্যবান এই কোম্পানির ওপর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ শিথিল করে এর শেয়ার বাজারে ছাড়ছে? তেলের দাম পড়ে যাওয়ার পর সৌদি আরব যে মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে সেটিকে এর অন্যতম একটি কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সৌদি অর্থনীতিতে সংস্কারের লক্ষ্যে 'ভিশন ২০৩০' বলে যে পরিকল্পনা ঘোষণা করেন, এটি তারই অংশ। তিনি তেলের ওপর সৌদি অর্থনীতির নির্ভরতা কমাতে চান। অর্থনীতির বিভিন্ন খাত বাইরের বিনিয়োগের জন্য খুলে দিতে চান। সেই সঙ্গে ২০১৪ সাল হতে সৌদি সরকার যে বাজেট ঘাটতির মুখোমুখি, সেটি কমিয়ে আনতে চান। সৌদি আরামকোর শেয়ার বিক্রি থেকে যে অর্থ পাওয়া যাবে, তা জ��া হবে সৌদি পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড বা পিআইএফে। এই তহবিলের অর্থ বিনিয়োগ করা হবে নানা ধরণের প্রকল্পে। সৌদি আরামকোর বাকী ৯৫ শতাংশ মালিকানাও চলে যাবে এই তহবিলের কাছে। আরামকোর শেয়ার নিয়ে টানাটানি বাজারে শেয়ার ছাড়ার ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই সৌদি আরামকো নিয়ে রীতিমত প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে বিশ্বের বড় বড় স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর মধ্যে। সবাই চাইছে আরামকো'র আইপিও তাদের বাজার থেকেই ছাড়া হোক। গত বছরের মে মাসে যখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে সৌদি আরব সফরে যান, তখন তার সঙ্গে ছিলেন লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জের শীর্ষ কর্মকর্তা। সেখানে তারা আরামকোর শেয়ার লন্ডন থেকে ছাড়ার জন্য দেনদরবার করেছেন বলে ধারণা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য অত রাখ-ঢাকের মধ্যে ছিলেন না। তিনি রীতিমত টুইট করে সৌদি আরবের প্রতি আহবান জানিয়েছেন, আরামকো-কে যেন নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত করা হয়। সৌদি কর্মকর্তারা বলছেন, তারা লন্ডন, নিউইয়র্ক, টোকিও এবং হংকং - এই সব কটি শেয়ার বাজারকেই তাদের বিবেচনায় রেখেছেন। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ঠিক দু বছর আগে যখন ঘোষণাটি দিয়েছিলেন, তা শুনে প্রথম স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন লন্ডন, নিউইয়র্ক থেকে শুরু করে বিশ্বের বড় বড় শেয়ার মার্কেটের কর্তাব্যক্তিরা। +text: গুহার ভেতরে একটা খাঁজের মধ্যে বসে আছে ১৩ জনের দলটি চিয়াং রাই প্রদেশের পাহাড়ি গুহাটির ভেতর এমনভাবে পানি ঢুকে পড়েছে যে তাদের সেখান থেকে বাইরে বেরিয়ে আসার পথটি পুরোপুরি ডুবে গেছে। আর ১৩ জনের ফুটবল দলটি সেই গুহার মধ্যে একটি কার্নিশের মতো শুকনো খাঁজে বসে আছে। নয় দিন নিখোঁজ থাকার পর দলটিকে সোমবার খুঁজে পায় ব্রিটিশ উদ্ধারকারী ডুবুরিদের একটি দল। উদ্ধারকর্মীরা ও সেনাবাহিনী বলছে, দলটি এমন জায়গায় আটকা পড়ে আছে যে গুহার বাইরে আসতে হলে তাদের ডুবুরির মতো পানির নিচ দিয়ে সাঁতরানো শিখতে হবে, অথবা কয়েক মাস গুহার মধ্যেই অপেক্ষা করতে হবে - যতদিন পানি নেমে না যায়। সেনাবাহিনী বলছে, তাদেরকে হয়তো আগামী চার মাস ধরে বাইরে থেকে খাবার পাঠাতে হবে। উদ্ধারকারীরা এখন জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন, কিভাবে ক্রমাগত বাড়তে থাকা পানি অতিক্রম করে দলটির কাছে খাবার ও অন্যান্য সাহায্য পৌঁছে দেয়া যায়। গুহার ভেতরে বিদ্যুত ও টেলিফোন লাইন বসান���র চেষ্টাও করা হচ্ছে - যাতে এই কিশোররা তাদের বাবা-মায়ের সাথে কথা বলতে পারে, বলছিলেন চিয়াং রাইয়ের গভর্নর নারোংসাক ওসোত্থানাকন। কিভাবে তাদের পাওয়া গেল? গুহায় আটকা পড়া থাই কিশোরদের সেই ফুটবল দল এক সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে ১২জন কিশোর ফুটবলার এবং তাদের কোচ থাইল্যান্ডের চিয়াং রাই প্রদেশের একটি গুহায় প্রবেশের পর নিখোঁজ হয়। তাদের উদ্ধারের জন্য ত্রাণ কাজে যোগ দিতে আসা দুজন ব্রিটিশ ডুবুরি সোমবার রাতে তাদের খুঁজে পান। থাই নৌবাহিনীর বিশেষ দল আটকেপড়া দলটির সাথে উদ্ধারকারীদের প্রথম যোগাযোগের মুহূর্তের ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করেছে। ভিডিওটি দেখতে পারেন এখানে> টর্চের আলোয় দেখা যায় ওই কিশোররা গুহার মধ্যে একটি কার্নিসের মতো জায়গায় বসে আছে। তারা ডুবুরিদের জানায় যে ১৩ জনের সবাই সেখানে আছে এবং তারা খুবই ক্ষুধার্ত। তারা জানতে চায়, কখন তারা এখান থেকে যেতে পারবে। ডুবুরিরা তাদের জানান, তাদের অপেক্ষা করতে হবে, আরো লোক সেখানে আসবে। তখন একজন কিশোর বলে, "ঠিক আছে, কাল দেখা হবে।" থাইল্যান্ডের ফুটবল দলকে অবশেষে জীবিত অবস্থায় খুঁজে পাওয়া গেছে এর আগে গুহার প্রবেশ পথে তাদের সাইকেল পাওয়া গিয়েছিলো। এরপর উদ্ধারকারী দল প্রথম খুঁজে পায় তাদের পায়ের জুতা এবং ব্যাগ। ২৪ শে জুন প্রবল বৃষ্টির পানিতে গুহার মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। প্রবল বৃষ্টিপাতে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হতে থাকে তখন পানি তোলার পাম্প বসানো হয়, রোবট ব্যবহার করা হয়। এরপর তারা পায়ের ছাপ আবিষ্কার করে কিন্তু ছেলেদের কোন চিহ্ন পায়নি। যেহেতু বৃষ্টি অব্যাহত ছিল তাই তারা গুহায় ঢোকার অন্য রাস্তা খুঁজতে থাকেন। আরো পড়ুন: গুহায় আটকে পড়লে কী করতে হবে? 'সবাইকেই জঙ্গি মনে হতো, বাড়ি থেকে বের হতাম না' 'নাটুকে' নেইমারে তৃপ্ত ব্রাজিল, বিরক্ত বাকি বিশ্ব রাখাইনে যা দেখে এলেন রেডক্রস প্রেসিডেন্ট দলটিকে জীবিত খুঁজে পাওয়ার খবরে উল্লসিত অভিভাবকদের দু'জন উদ্ধারকারীদের রীতিমত সময়ের সাথে যুদ্ধ করতে হয় যাতে করে ভিতরে পানির উচ্চতা বেড়ে না যায়। কিন্তু গুহায় ঢোকার প্রধান প্রবেশ পথটি বৃষ্টির কারণে একেবারে প্রবেশের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এরপর খোঁজা শুরু হয় একটা চিমনির। গুহার উত্তর দিকে একটা প্রাকৃতিক চিমনি আবিষ্কার করা হয়। ২৯শে জুন গুহার ভিতরে বন্যার পানি কমতে শুরু করে। উদ্ধার-কর্মীদের এটাই সুযোগ করে দেয় ভিতরে ঢোকার, আশা বাড়তে থাকে। সোমবার রাতে খবর আসে, তাদের সবাইকে জীবিত এবং নিরাপদ অবস্থায় পাওয়া গেছে। এই খবরে, অপেক্ষায় থাকা পরিবারগুলো আনন্দে উল্লাস প্রকাশ করেছে। এখন চলছে তাদের উদ্ধারের চেষ্টা। আর সেজন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছেন স্বজনেরা। থাইল্যান্ডের গুহায় আটকে পড়েছে তরুণ ফুটবলারদের দল থাইল্যান্ডে একটি গুহায় আটকে পড়া ১২ জন কিশোর ফুটবলার এবং তাদের কোচকে জীবিত পাওয়া গেলেও, উদ্ধার করে বাইরে নিয়ে আসতে কয়েক মাস পর্যন্ত লাগতে পারে - বলছে সেদেশের সেনাবাহিনী। +text: সামাজিক দূরত্ব মেনে এবারের হজ। একেবারের অন্যরকম চিত্র। স্মরণকালের ইতিহাসে এবারের মতো এত কম মানুষ আর হজ করেনি। আর সেবছরই হজে যাওয়ার সুযোগ এক বিরল সৌভাগ্যই বলতে হবে। ফরিদাহ তার এই হজের অভিজ্ঞতা তার স্মার্টফোন দিয়ে প্রতি মুহূর্তে শেয়ার করছেন তার পরিবারের সঙ্গে। ৩৯ বছর বয়সী ফরিদাহ তার স্বামী এবং তিন মেয়েকে মক্কার ফাইভ-জি নেটওয়ার্কের বদৌলতে হজের প্রতিটি পদক্ষেপ, প্রতিটি আনুষ্ঠানিকতা লাইভ দেখিয়ে যাচ্ছেন। "আমার স্বামী যে আমার সঙ্গে অনলাইনে আমার সঙ্গে যোগ দিতে পারছে, সেই সঙ্গে আমার মেয়েরাও, সেজন্যে আমি খুব খুশি।" হজের প্রথম দিনে বেশিরভাগ মানুষই তাদের স্মার্টফোন উপরে ধরে সেলফি তুলছিলেন, পরিবার আর বন্ধুদের জন্য হজের আনুষ্ঠানিকতা লাইভ স্ট্রিম করছিলেন। মাত্র গত বছরই মক্কায় সুপার-হাইস্পিড ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক চালু করা হয়। ফলে স্মার্টফোন থেকে এগুলো এখন করা যাচ্ছে খুবই সহজে। চীনা হজযাত্রী নি হাওয়ু ইন্দোনেশিয়ার ফরিদাহর মতই আরেক সৌভাগ্যবান। যখন তাকে হজ করার জন্য বাছাই করা হলো, আনন্দে তার চোখে পানি চলে আসলো। ৪২ বছর বয়সী নি মাস্টার্স করছেন ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব মদিনায়। সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মোবাইল ফোনে টেক্সট মেসেজে যখন খবরটি এলো, সেই মুহূর্তের অনুভূতি ভুলতে পারেন না তিনি। "হজ করার জন্য যখন আমাকে বাছাই করা হলো, তারপর থেকে আমি খুশিতে আত্মহারা। আমি কান্না থামাতে পারছিলাম না, কারণ আল্লাহ আমার হজ করার বাসনা পূর্ণ করেছেন। একেবারে বিনা খরচে আমি এই হজ করছি।" এর আগে হজের সময় কাবা পরিণত হতো এক জনসমুদ্রে গত বছর হজে অংশ নিয়েছিল ২৫ লাখের বেশি মুসলিম। কিন্তু এবার করোনাভাইরাস মহামারির কারণে আর সব কিছুর মতো বিশ্বের মুসলিমদের সবচেয়ে বড় এই সমাবেশের ক্ষেত্রেও সৌদি কর্তৃপক্ষকে জারি করতে হয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ। এবছর হজে অংশ নেয়া মানুষের সংখ্যা সীমিত করে দেয়া হয়েছে কয়েক হাজারে। শুরুতে সৌদি কর্তৃপক্ষ বলেছিল, মাত্র এক হাজার মানুষকে হজ করতে দেয়া হবে। এখন অবশ্য সৌদি গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, দশ হাজার মানুষ হজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। আনন্দ অশ্রু হজের প্রথম দিনে ফরিদাহ যখন সোনালি কারুকাজ করা কালো কাপড়ে আবৃত মক্কার কাবা শরিফের দিকে এগুচ্ছেন, তখন তার ফোন থেকে একটি ভিডিও কল করলেন। ফোনের অপর প্রান্তে তার স্বামী হেন্ড্রা সামোসির । "আমার স্ত্রী যখন কাবা শরিফে ঢুকলেন এবং আমাকে কাবা দেখালেন, খুশিতে, আনন্দে আমার চোখে পানি এসে গেল", বললেন তিনি। "আমার জন্য এটাই আসলে একরকম পবিত্র তীর্থযাত্রা, যদিও আমি সেখানে যাইনি। কিন্তু যখন আমি আমার স্ত্রীকে হজ করতে দেখছিলাম, আমার মনে হচ্ছিল আমিও সেখানে আছি।" ইন্দোনেশিয়া থেকে প্রতিবছর সাধারণত হাজার হাজার মানুষ হজ করতে যান। অনেকে সারাজীবন ধরে সঞ্চয় করেন জীবনে একবার হজে যাওয়ার জন্য। কিন্তু এবছর দশ-বারোজন মানুষও ইন্দোনেশিয়া থেকে হজে আসতে পারেননি। সৌদি কর্তৃপক্ষ করোনাভাইরাসের কারণে এবার যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে, তার কারণে মাত্র দশ হাজার মানুষকে হজে আসার সুযোগ দেয়া হয়। একটি লটারির মাধ্যমে এদের বাছাই করা হয়। এই লটারির নিয়মকানুন কি ছিল, তা খুব স্পষ্ট নয়। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস হজ নিয়ে দোটানায় সৌদি আরব হজ কোটা বিভিন্ন দেশের জন্য যেভাবে নির্ধারিত হয় হজ থেকে কত টাকা আয় করে সৌদি আরব? হজ করতে গিয়ে যৌন হয়রানি: মুখ খুললেন আরেক নারী হজে আসার জন্য আগ্রহী সারা বিশ্বের লাখ লাখ মানুষকে এবার তাই আশাহত হয়ে হয়েছে। যারা এবার হজ করছেন, তাদের ৭০ শতাংশই বিদেশি, বাকি ৩০ শতাংশ সৌদি আরবের বাসিন্দা। সৌদি আরব থেকে তাদেরকেই হজে যেতে দেয়া হয়েছে, যারা চিকিৎসক বা নিরাপত্তা কর্মী এবং যারা করোনাভাইরাস থেকে সেরে উঠেছেন। হজযাত্রীদের নানা আনুষ্ঠানিকতার জন্য বহু দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হয় ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা হজের আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নেয়ার সময় মুসলিমদের মাইলের পর মাইল হাঁটতে হয়, দিনে কয়েক ঘন্টা করে প্রার্থনা করতে হয়। বাইরে খোলা জায়গায় রাত্রি যাপন করতে হয়। প্রতি বছর যখন লাখ লাখ মুসলিম এসব আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নেন, তখন মক্কা এবং মদিনাকে ঘিরে চারপাশের এলাকা পরিণত হয় জনসমুদ্রে। মানুষের ভিড়ে পদদলিত হয়ে বহু মানুষ মারা গেছেন এর আগে হজ করার সময়। কিন্তু এবারের হজযাত্রীরা একেবারেই এক ভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা বলছেন। সৌদি নার্স ওয়াজদান আলি বলেন, "এবার মানুষের ভিড় নেই, তাই আমি আমার সব আনুষ্ঠানিকতা সহজে পালন করতে পারছি। এবারের পরিবেশটা তাই খুব শান্ত-সমাহিত, অনেক বেশি আধ্যাত্মিক পরিবেশ।" ২৫ বছর বয়সী ওয়াজদান আলি থাকেন লোহিত সাগর তীরের শহর জেদ্দায়। সম্প্রতি করোনাভাইরাস থেকে সেরে উঠেছেন। সেজন্যেই তাকে বাছাই করে এবার হজ করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। এবার প্রত্যেক হজযাত্রীর হাতে পরিয়ে দেয়া হয়েছে একটি রিস্টব্যান্ড, যাতে সৌদি কর্তৃপক্ষ সারাক্ষণ জানতে পারেন তার অবস্থান। কোয়ারেনটিনে থাকে মানুষদের ওপর নজরদারির জন্য এই ব্যবস্থা। ওয়াজদান আলি বলছেন, এটা একটা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। প্রতিটি হজযাত্রীকে সৌদি কর্তৃপক্ষ করোনাভাইরাসের জন্য পরীক্ষা করেছে। তাদের মুখোশ পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং পরস্পর থেকে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে। যে পাঁচদিন ধরে হজের আনুষ্ঠানিকতা চলবে, সে কদিন তাদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা হবে নিয়মিত। মিনায় শয়তানের দিকে ঢিল ছুঁড়ে মারছেন হজযাত্রীরা এবছর হজে অংশগ্রহণকারীরা জানান, সৌদি কর্তৃপক্ষ তাদের যে ইহরাম দিয়েছেন (হজে অংশ নেয়ার সময় সেলাই ছাড়া যে সাদা কাপড় পরতে হয়), সেটি ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী কাপড় দিয়ে তৈরি। সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, এখন পর্যন্ত হজের আনুষ্ঠানিকতা ভালোভাবেই আগাচ্ছে। হজযাত্রীদের স্বাস্থ্য নিয়ে এখনো পর্যন্ত কোন উদ্বেগজনক খবর পাওয়া যায়নি, করোনাভাইরাস সংক্রমণের একটি ঘটনাও ধরা পড়েনি। হজযাত্রীরা আজ আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে "শয়তানের দিকে পাথর ছোঁড়ার‌' যে রীতিটিতে অংশগ্রহণ করেন, সেই পাথরগুলোও ছিল স্যানিটাইজড। তীব্র রোদের মধ্যে তারা যখন মিনা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন, তখন তাদের ওপর সতর্ক নজর রাখছিল নিরাপত্তা রক্ষীরা। হজযাত্রীদের মুখে মাস্ক, পরণে হজের সাদা কাপড়। ডিজিটাল হজ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হজের নানা আনুষ্ঠানিকতায় ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার অনেক বেড়েছে। কোরান এখন পাওয়া যাচ্ছে ডিজিটাল ফর্মাটে, বেরিয়েছে হজের নানা আনুষ্ঠানিকতা সহজে পালনের জন্য ���ানা ধরণের অ্যাপ। কাবা মুসলিমদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র তীর্থস্থান হজে আসা অনেক মানুষ এখন তাদের স্মার্টফোন থেকেই কোরান পড়েন। ফলে আগের যুগের মতো ছাপানো কোরান শরিফ সাথে বহন করতে হয় না। তবে শুধু কোরান পড়া কিংবা হজের ভিডিও এবং ছবি শেয়ার করার মধ্যেই ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার থেমে নেই। অনেকে যাতে তাদের ঘরে বসেই হজের আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নিতে পারেন, এটি সেই সুযোগও করে দিয়েছে। এখন অনেক অনলাইন প্ল্যাটফর্ম আছে, যেখানে গিয়ে সারাবছরই ওমরাহ হজ করা যায়। একজনের পক্ষ হয়ে আরেকজনের ওমরাহ হজ করার যে ধারণা, তার ওপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে এধরণের সেবা। যার জন্য ওমরাহ হজ করা হচ্ছে, তিনি অনলাইনে গিয়ে হজের অভিজ্ঞতা প্রত্যক্ষ করেন যিনি সৌদি আরবে হজে শারীরিকভাবে অংশ নিচ্ছেন তার সঙ্গে। অনেকধরণের ভার্চুয়াল রিয়ালিটি টুল আছে এসব অনলাইন প্লাটফর্মে। অনেক ধর্মীয় নেতা এরকম হজের ধারণাকে সমর্থন করেন। কিন্তু অনেকে এর বিরোধী। তারা বলছেন, কেবল খুবই অসুস্থ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেই অপর একজনের মাধ্যমে এভাবে হজ করার বিধান আছে। ফরিদাহ বকতি ইয়াহরা এবছর যেভাবে হজ করার সুযোগ পেয়েছেন, তাকে লটারি জেতার সঙ্গেই তুলনা করা যেতে পারে। এই হজে যাওয়া ছিল তার সারাজীবনের স্বপ্ন। +text: ভারতে কেবল ২০১৫ সালেই দশ হাজার ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। পরিবারের সদস্য দ্বারা ধর্ষিত মেয়েটি অন্তসত্ত্বা হয়ে পড়ার পর তাকে গর্ভপাত করানোর জন্য আদালতের অনুমতি চেয়েছিল মেয়েটির পরিবার। কিন্তু সেই আবেদন আদালত নাকচ করে দেয় মেয়েটির জীবন এতে বিপন্ন হতে পারে এমন আশংকায়। গত বৃহস্পতিবার সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে মেয়েটির সন্তান ভূমিষ্ট হয় চন্ডীগড়ের এক হাসপাতালে। মেয়েটির চিকিৎসক ডাঃ ডাসারি হারিশ জানান, মেয়েটিকে অস্ত্রোপচার করার কথা ছিল সোমবার। কিন্তু রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ায় তারা শুক্রবারেই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। মেয়েটি যে একটি সন্তানের জন্ম দিয়েছে সেটি তাকে জানানো হয়নি। তাকে বলা হয়েছে, পেটের ভেতর বড় একটি পাথর ধরা পড়েছে। সেটি অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে। মেয়েটি অভিযোগ করেছিল, তাকে তার চাচা কয়েক মাস ধরে ধর্ষণ করেছে। এই লোকটিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। মেয়েটি যে গর্ভবর্তী হয়ে পড়েছে, তা ধরা পড়ে গত জুলাই মাসে। পেটে ব্যাথা হচ্ছে বলে সে তার বাবা-মাকে জ���নিয়েছিল। তখন তাতে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। মেয়েটি যে সন্তানের জন্ম দিয়েছে তার ওজন দুই দশমিক দুই কেজি। ১৬ সদস্যের যে চিকিৎসক দল মেয়েটির শরীরে অস্ত্রোপচার চালায়, তার প্রধান ছিলেন ডাঃ হারিশ। তিনি জানান, দেড় ঘন্টার বেশি সময় ধরে এই অপারেশন চলে। সব কিছু পরিকল্পনামাফিক হয়েছে। তিনি জানান, সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী মঙ্গলবার মেয়েটিকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হবে। মেয়েটি যে সন্তান জন্ম দিয়েছে, তার পরিবার সেটিকে নিতে চায়নি। তাই এই শিশুটিকে দত্তক দেয়া হবে। তার আগে পর্যন্ত একটি শিশু কল্যাণ কমিটি শিশুটির দেখাশোনা করবে। ভারতে এই মেয়েটির ধর্ষণ, অন্তসত্ত্বা হওয়ার পর গর্ভপাতের আবেদন নিয়ে আদালতে আইনি লড়াই এবং সন্তান জন্ম দেয়ার এই ঘটনা ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করে। ভারতে অর্ধেকেরও বেশি শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয় ভারতে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের চিত্র: ভারতে দশ বছর বয়সী যে মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয়ে একটি কন্যা শিশুর জন্ম দিয়েছে, সে এবং তার শিশু সন্তান দুজনেই ভালো আছে। বিবিসিকে একথা জানিয়েছেন মেয়েটির চিকিৎসক। +text: এ বছরের অগাস্টে কোরবানি ঈদের সময় ছাদ ভর্তি মানুষ বিশেষত ঈদের আগে-পরে কিছু রুটে ট্রেনের ভেতরে যত তার চেয়ে ছাদে যাত্রীর সংখ্যা বেশি ছাড়া কম থাকে না। শুধু যে টিকেট না পেয়ে ছাদে ওঠেন অনেক যাত্রী তা নয়, বিনা পয়সায় যাতায়াতের উদ্দেশ্যেও অনেকে জীবনের ঝুঁকি নেন। এ নিয়ে মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন মহল থেকে উদ্বেগ প্রকাশ হয়েছে। তারপরও কখনই এই ছাদে চড়ে ভ্রমণ থামেনি। কিন্তু বাংলাদেশের রেল কর্তৃপক্ষ এখন বলছেন, তার আর ছাড় দেবেন না। পহেলা সেপ্টেম্বর রোববার থেকে ছাদে উঠলে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করা হবে বলে রেল বিভাগের পক্ষ থেকে এক গণ-বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। আর এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কিছু পদক্ষেপও নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। যেমন, বড় স্টেশনগুলোতে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) উপস্থিতি বাড়ানো হচ্ছে। কমলাপুর স্টেশনে আরএনবির একজন কর্মচারী, নাম প্রকাশ না করার শর্তে, বিবিসিকে বলেন, কোরবানির ঈদের পর থেকেই ট্রেনের ছাদে উঠে যেন কেউ ভ্রমণ করতে না পারে সেদিকে নজর বাড়ানো হয়েছে। তবে তিনি বলেন , স্টেশনে উঠতে না দিলেও স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার পর ট্রেনের গতি যখন কম থাকে তখন অনেক যাত্রী চলন���ত ট্রেনেই ছাদে উঠে পড়ে। আরও পড়ুন: ঢাকা-কলকাতা ট্রেন যাত্রায় তিন ঘণ্টা সময় কমবে ঢাকা শহরে রিকশার ভবিষ্যৎ কী "ট্রেন ছাড়ার পর কিছু যাত্রী ছাদে উঠে পড়ে। এরকম ঘটনা দেখার সাথে সাথে আমরা ওয়ারলেসের মাধ্যমে পরবর্তী স্টেশনে খবর পাঠিয়ে দেই।" বর্তমান আইনে ট্রেনের ছাদে উঠলে সর্বোচ্চ শাস্তি ৫০ টাকা জরিমানা নানাধরনের প্রস্তুতি থাকলেও রেলওয়ে পুলিশের কয়েকজন সদস্যের সাথে কথা বলে জানা যায় ছাদে ওঠা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধকতা হতে পারে লোকবলের সঙ্কট। সেই সাথে লঘুদণ্ডের কথাও বলেছেনে রেল পুলিশের বেশ ক'জন। ঢাকা জেলার রেল পুলিশের পরিদর্শক সাইফুল্লাহ আল মামুন বলেন, এই আইন বাস্তবায়ন সম্ভব, তবে প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ হতে পারে। "অনেক সময়ই দেখা যায় ট্রেনের ভেতরে জায়গা থাকলেও মানুষ ছাদে উঠে বসে আছে। মানুষের অভ্যাসের পরিবর্তনের চেষ্টা করাটাই আমাদের মূল লক্ষ্য ।" জরিমানা মাত্র ৫০ টাকা রেল পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, ছাদে ওঠা সংক্রান্ত বিদ্যমান আইনটির সংশোধন করাও জরুরি কারণ এতে শাস্তির ব্যবস্থা নগণ্য।। বাংলাদেশের বর্তমান আইন অনুযায়ী ট্রেনের ছাদে ওঠার শাস্তি ৫০ টাকা জরিমানা, যেটি ১৮৯০ সালের রেলওয়ে আইনে রয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে উঠে চলাচল (ফাইল ফটো) রেলওয়ে পুলিশের অনেক সদস্যই মনে করেন যে মাত্র ৫০ টাকা জরিমানার বিধান থাকলে ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ করা থেকে মানুষকে নিরুৎসাহিত করা সম্ভব হবে না। রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব মোফাজ্জেল হোসেন বিবিসিকে জানান বিদ্যমান আইন সংশোধন করে সময়োপযোগী করার কাজ করছেন তারা। কনসাল্টেন্ট এবং আইনজ্ঞ নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তা হলেই আইন সংশোধনের কাজ শুরু করা হবে। "তবে আমরা এখন থেকেই চেষ্টা করবো যেন মানুষের অভ্যাস পরিবর্তন হয়, তারা যেন টিকিট ছাড়া স্টেশনে না ঢোকে এবং ছাদে না ওঠে।" ট্রেনের ছাদে চড়া বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও এই দৃশ্য একেবারেই স্বাভাবিক। +text: ২০১৭ সালের অগাষ্ট মাস থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের থিংক ট্যাংক 'নিউলাইনস ইন্সটিটিউট অন স্ট্রাটেজি এন্ড পলিসি'র একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এই আহবান জানান�� বাংলাদেশের তথ্য অধিদপ্তরের একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত, কংগ্রেসের সদস্য, স্টেট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তারা সশরীরে ও অনলাইনের মাধ্যমে অংশ নিয়েছেন। আরো পড়ুন: যে ৫টি দাবি পূরণ হলে বার্মায় ফিরতে রাজি রোহিঙ্গারা রোহিঙ্গাদের অনাগ্রহে শুরু করা গেলো না প্রত্যাবাসন বার্মিজ মিডিয়ায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চেষ্টা প্রত্যাবাসন আদৌ হবে কি-না বা হলে কবে হবে তা নিয়ে অবিশ্বাস আরো জোরালো হচ্ছে রোহিঙ্গাদের মধ্যে সেখান আব্দুল মোমেন রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়া, তাদের কল্যাণে কর্মকাণ্ড তুলে ধরার পাশাপাশি কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্প থেকে কিছু রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নেয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাইডেন প্রশাসন মিয়ানমারের ওপর আরও বেশি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে, যার ফলে রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়ার একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি হবে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন যে, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে আশা করছে যে, এই সংকটের সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন শক্ত পদক্ষেপ নেবে ও নেতৃত্ব দেবে। তিনি এসব সংকট সমাধানে রোহিঙ্গা বিষয়ক একজন বিশেষ দূত নিয়োগ করার জন্যও যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের প্রতি প্রস্তাব দিয়েছেন। যার কাজ হবে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান ও প্রত্যাবাসনের বিষয় দেখভাল করা। ২০১৭ সালের অগাস্ট মাসে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতনের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় গ্রহণ করে। সরকারি হিসাবে বাংলাদেশে এখন ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে, যাদের বেশিরভাগই কক্সবাজারের নানা ক্যাম্পে বসবাস করে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা করা হলেও এখনো প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি, দেশব্যাপী বিক্ষোভের হুঁশিয়ারি খাসোগজি হত্যার অনুমোদন দিয়েছিলেন সৌদি যুবরাজ, বলছে যুক্তরাষ্ট্র মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে ১৩ দেশের রাষ্ট্রদূতের উদ্বেগ খাসোগজি হত্যা রিপোর্ট প্রকাশের আগে সৌদি বাদশাহকে বাইডেনের ফোন ব্রিটেনে ফিরতে পারবেন না শামীমা বেগম রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে প্রধান ভূমিকা পালন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের প্রতি আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশ। এই সংকট সমাধানে রোহিঙ্গা বিষয়ক একজন বিশেষ দূত নিয়োগ করার জন্যও তিনি প্রস্তাব দিয়েছেন। +text: গত দুই দিন মুন্সীগঞ্জের মাওয়া এবং মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটে হাজার-হাজার মানুষ ভিড় করেছে। এদের অনেকে ঈদ উদযাপনের জন্য গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। এমন পরিস্থিতি যাতে আর তৈরি না হয় সেজন্য বিজিবি মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার বিবিসি বাংলাকে বলেন, মাওয়া ফেরিঘাট এবং ধলেশ্বরী ব্রিজে দুই প্লাটুন বিজিবি এরই মধ্যে মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি জানান, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আন্ত:জেলা গণপরিবহন এবং ফেরি সার্ভিস বন্ধ রয়েছে। মানুষ জনের চলাচল নিরুৎসাহিত করার জন্য রাস্তায় এবং ফেরিঘাটে বিজিবি চেকপোস্ট থাকবে। কর্মকর্তারা বলছেন, মাওয়া এবং পাটুরিয়ার ফেরিঘাটে শুক্র এবং শনিবার হাজার-হাজার মানুষ ভিড় করলে এক পর্যায়ে ফেরি দিয়ে লোকজনকে নদী পার করে দিতে বাধ্য হয়েছে সংশ্লিষ্টরা। রবিবার যাতে এই পরিস্থিতি তৈরি না হয় সেজন্য বিজিবি কড়া অবস্থানে থাকবে বলে কর্মকর্তারা বলছেন। মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস বিবিসি বাংলাকে বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে সেটি যাতে ঠিকমতো বাস্তবায়ন হয় সেজন্য বিজিবি মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক জানান, জেলার তিনটি স্থানে বিজিবি চেকপোস্ট থাকবে। যাতে কেউ সে জেলার ভেতরে কিংবা বাইরে যেতে না পারে। তিনি বলেন, "আমরা স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চাই। সেজন্যই ব্যবস্থা।" কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক মৃতদেহ বহনকারী গাড়ি, রোগী এবং পণ্যবাহী গাড়ি পারাপারের জন্য ফেরি চলাচল করবে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন চীনা রকেটের ধ্বংসাবশেষ ধেয়ে আসছে পৃথিবীর দিকে কীভাবে ১৯৪৭ সালে দু'ভাগ হয়েছিল কাশ্মীর করোনা টিকার প্রথম ডোজ নেয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ না পেলে কী হবে ঢাকা শহর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষজনের যাতায়াত বন্ধ করতে ফেরিঘাটগুলোতে আধাসামরিক বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হবে রবিবার থেকে বলে জানিয়েছেন প্রশাসন। +text: ধর্ষণ ইস্যুতে সম্প্রতি বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিক্ষোভ দেখায় শিক্ষার্থীরা। পুলিশ বলছে, কিশোরীটিকে ধর্ষণকারীর হাতে তুলে দিতো তার নিজের পিতা। এই অভিযোগে কিশোরীটির পিতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে অভিযুক্ত ধর্ষণকারীকে এখনো ধরা যায়নি। ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকার কাছেই। পুলিশ বলছে, তাদের হাতে এমন একটি কথোপোকথনের রেকর্ড আছে, যেখানে ধর্ষণের শিকার কিশোরীটির পিতা অভিযুক্ত ধর্ষণকারীকে পালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে। তেরো বছর বয়েসী এই কিশোরীটির মা বিদেশে থাকে। মায়ের সাথে বাবার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে আগেই। পুলিশ বলছে, ৯৯৯ এ একটি ফোন পেয়ে তারা মঙ্গলবার কিশোরীটিকে উদ্ধার করে। কিশোরীটিকে প্রায় এক বছর ধরে ধর্ষণের শিকার হয়ে এলেও মঙ্গলবার সে তার বাড়ির তত্ত্বাবধায়কের কাছে বিষয়টি জানিয়েছিল। ওই তত্ত্বাবধায়কই পুলিশকে ফোন দেয়। পরে কিশোরিটিকে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) নিয়ে ভর্তি করা হয়। জানা যাচ্ছে, কিশোরীটির বাবা একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। একজন মহাজনের কাছে ব্যবসার জন্য টাকা ধার নিয়েছিলেন। সেই টাকা শোধ করতে না পারলে মহাজন বিনিময়ে কিশোরীটিকে ধর্ষণের প্রস্তাব দেয়। বাবাও রাজী হয়ে যায় এবং মেয়েকে ধর্ষণের সুযোগ করে দেয়। এভাবে টানা এক বছর ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে মহাজন। এক পর্যায়ে কিশোরীটি অসুস্থ হয়ে পড়েছিল এবং সেজন্যই সে বাড়ির তত্ত্বাবধায়ককে বিষয়টি জানিয়েছিল বলে উল্লেখ করছে পুলিশ। আরো পড়ুন: যে দুঃশ্চিন্তা আচ্ছন্ন করে রাখে ঢাকার পথচারী নারীদের আটক ব্যক্তিকে ‘সিরিয়াল রেপিস্ট’ বলছে র‍্যাব যৌন সহিংসতার ঘটনা প্রকাশে যেভাবে মূল্য দিতে হয় ধর্ষণ আতংকে পথচলতি নারীদের উদ্বেগ পুলিশের যে কর্মকর্তার সঙ্গে বিবিসির কথা হয়েছে, তিনি বলছিলেন, "উদ্ধারের পর মেয়েটি অসুস্থ ছিল। সে তার বাবার কথা উল্লেখ করেছিল কিন্তু আমরা বিশ্বাস করিনি। ভেবেছি যে, অসুস্থতার কারণে হয়তো ভুল করে এসব বলছে।" কিন্তু মোবাইল ফোনের কথোপোকথন হাতে আসার পরই সত্যতার প্রমাণ মেলে। "ভয়েজ ক্লিপে বাবা ধর্ষককে বলছিল পালাও, পালাও। এরপরই আমরা নিশ্চিত হই যে বাবার সম্পৃক্ততা রয়েছে," বলেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা। ওসিসির তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিলকিস বেগম জানাচ্ছেন, আজই (বুধবার) কিশোরীটির ফরেনসিক পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন তার কাউন্সেলিং চলছে। এ ঘটনায় উদ্ধারকারী তত্ত্বাবধায়ক একটি মামলা দায়ের করেছেন। ছোট্ট এই মেয়েটি তার মায়ের ফোন নাম্বার পর্যন্ত জানে না। বাবা গ্রেপ্তার হওয়ার পর বাড়িতে রয়েছে শুধু তার অসুস্থ দাদী এবং তার ভাই, যে নিজেও কিশোর বয়সী। পুলিশ জানাচ্ছে, এই কিশোরী বা তার পরিবারের দেখভাল করতে পারে,এমন কোন মানুষের সাথে যোগাযোগ করারও কোন উপায় পাওয়া যাচ্ছে না। বিবিসি বাংলার আরো খবর: ইরানে বিমান বিধ্বস্তের ভিডিও করা ব্যক্তি কেন গ্রেপ্তার? মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সম্পর্কে কিছু তথ্য কেন সংবিধান বন্দনা করছেন ভারতের বিক্ষোভকারীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক কিশোরীকে ভর্তি করা হয়েছে, যাকে ধারাবাহিকভাবে দিনের পর দিন ধর্ষণ করা হয়েছে। +text: মা শার্লিন রাইটের সঙ্গে কেইটলিন রাইট। যুক্তরাজ্যের ডোরসেট অঞ্চলের ছোট গ্রাম আসকার্সওয়েলের বসবাস করে কেইটলিন রাইট ও তার পরিবার। গত মাসের শুরুর দিকে কেইটলিনের মা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যান। ঘটনার দিন কেইটলিন তার মা শার্লিনের সঙ্গে বাড়িতেই ছিল। এক পর্যায়ে মা শার্লিন ভীষণ অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারান। এমন ঘটনায় ঘাবড়ে যায়নি কেইটলিন। বরং সে স্থানীয় জরুরি নম্বরে ৯৯৯ এ ফোন করে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে নেয়। এতো ছোট বয়সে এমন বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেয়ায় কেইটলিনের প্রশংসা এখন সবার মুখে মুখে। এ ব্যাপারে স্থানীয় সাউথ ওয়েস্টার্ন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস- সোয়াস কর্তৃপক্ষ জানান, "এতোটুকু বয়সে এই মেয়েটি যে বিজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছে, সেটা তুলনাহীন।" "সে যেভাবে ফোনের অপর-প্রান্তে থাকা ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছে, তার মায়ের অবস্থা ব্যাখ্যা করেছে সেটা আশ্চর্য হওয়ার মতোই।" পরে প্যারামেডিক্সরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে শার্লিনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। আরও পড়তে পারেন: শিশুর চিরকুট যেভাবে বাঁচালো ‘হাজার হাজার’ ডলার স্ক্রিন থেকে কীভাবে শিশুর চোখ ফেরানো যাবে? শিশু সুরক্ষা আইন ভেঙেছে ইউটিউব "লিটল গার্ডিয়ান এঞ্জেল" এরিমধ্যে ওই অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসটি শিশুটির সঙ্গে তাদের টেলিফোনের কথোপকথনের অডিও রেকর্ড প্রকাশ করেছে। সেখানে কেইটলিনকে বলতে শোনা যায় যে, "মা অজ্ঞান হয়ে পড়েছে এবং তার দেখাশোনা করা প্রয়োজন।" এ বিষয়ে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসটির মুখপাত্র জানান, "চার বছরের শিশু আমাদের ফোন কর��� তার উপস্থিত বুদ্ধি, প্রজ্ঞা আর ভীষণ সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে।" এ ব্যাপারে মিসেস রাইট তার মেয়ে কেইটলিনকে "লিটল গার্ডিয়ান এঞ্জেল" বা "ক্ষুদে রক্ষাকারী দেবদূত" হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, "সেইদিনটার কথা আমার এতোটুকুই মনে আছে যে, কেইটলিনের বাবা কেইটলিনকে বাসায় নিয়ে এসেছেন আর আমার কাছে জানতে চেয়েছেন বাজার করার প্রয়োজন আছে কিনা। তারপর কেইটলিনের বাবা চলে গেলেন। পরে শুধু এটাই মনে আছে যে একজন প্যারামেডিক আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।" মিসেস রাইট প্রায়ই এভাবে অসুস্থ হয়ে হাত পা কাঁপিয়ে অজ্ঞান হয়ে যান। এ কারণে তার এমন পরিস্থিতির বিষয়ে আশেপাশের মানুষ বেশ সচেতন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, "আমি প্রায় দিনই এভাবে অজ্ঞান হয়ে যাই। আমার তিন সন্তানই জানে যে সে সময়ে ঠিক কি করতে হবে। আমরা তাদের সেগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে শিখিয়ে-পড়িয়ে রেখেছি।" এতো অল্প বয়সে এতোটা সচেতন কিভাবে? কেইটলিনের বাবা সায়মন রাইট বলেছেন, "আমরা কেইটলিনকে এটুকুই শিখিয়েছি যে, টেলিফোনের একটি ছোট বোতাম তিনবার চেপে এবং এরপর একটি সবুজ বোতাম চেপে, কিভাবে সাহায্য চাইতে হয়।- এই ছোট শিক্ষাটাই আজ শার্লিনকে মৃত্যুর হাত থেকে ফিরিয়ে এনেছে।" "যদি কেইটলিন এমনটা না করতো, তাহলে তো আমাদের আজকে এভাবে একসঙ্গে বসে থাকা সম্ভব হতো না। এটা সত্যিই বিস্ময়কর।" মিসেস রাইট আরও বলেছেন "আমার প্রথম চিন্তা এটাই ছিল যে, আমি আমার তিন সন্তানের সাথেই নিরাপদ। এটি সম্ভবত বিশ্বের সেরা অনুভূতিগুলির মধ্যে একটি।" তিনি আরও বলেন, "আপনি যদি অসুস্থ বা বিপর্যস্ত থাকেন, দুর্বল হন বা শারীরিক পরিস্থিতি ভাল না হয়, তাহলে এ বিষয়টা খুবই ভীতিকর। কিন্তু আমি জানি যে আমার এই ছোট মেয়েটাও আমার জীবন বাঁচাতে পারে।" "সে আমাকে সেদিন বাঁচিয়েছে, আসলে এমন অনেক কিছুই ঘটতে পারতো যখন সেখানে কেউ ছিল না।" ব্রিস্টলের বাছে সোয়াসের ৯৯৯ কন্ট্রোল সেন্টারে ঘুরতে যায় কেইটলিন। শিশু কণ্ঠ শুনে অবাক: কেইটলিনের সেই জরুরি ফোন কলটির জবাব দিয়েছিলেন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের কর্মকর্তা জেস হডকিনসন। তিনি জানান যে, ঘটনার দিন তিনি এই ছোট্ট শিশুর বুদ্ধিমত্তা দেখে অভিভূত হয়েছিলেন। বিবিসিকে তিনি জানান, "কেইটলিনের সেই বাচ্চা কণ্ঠের আধো আধো বোল শুনে আমি প্রথমে খুব অবাক হয়েছিলাম। তাই শুনেই বুঝেছি যে কোন একটি ছোট শিশু ফোন দিয়েছে।" "তবে কেই��লিন ছিল ভীষণ সাহসী। সে আমার প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর স্পষ্টভাবে এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে জানিয়েছে। এবং সে জানত যে জরুরী অবস্থায় কী করতে হয়।"- এমনটিই জানান জেস হডকিনসন। কেইটলিনের এমন কাজের জন্য তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রশংসা করে কর্তৃপক্ষ। এরপর ব্রিস্টলের বাছে সোয়াসের ৯৯৯ কন্ট্রোল সেন্টারে ঘুরতে যায় কেইটলিন। সম্প্রতি ব্রিটেনে একটি শিশুর বুদ্ধিমত্তার কারণে বেঁচে গেছে তার মায়ের জীবন। চার বছরের ওই ছোট্ট মেয়েটির নাম কেইটলিন রাইট। +text: দেওবন্দের মাদ্রাসায় পরীক্ষার প্রস্তুতি (ফাইল ফটো) বুধবার দেওবন্দে একটি সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। এর আগেও তিনি বলেছিলেন যে এই শহরটি কোনও এক কারণে মুম্বাই হামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী হাফিজ সৈয়দ বা আইএস প্রধান বাগদাদির মতো মানুষ তৈরি করে। মি. সিং বিতর্কিত মন্তব্য মাঝে মাঝেই করে থাকেন। কিন্তু সুবিখ্যাত এই ইসলামি প্রতিষ্ঠান সন্ত্রাসবাদীদের জন্ম দেয় বলায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মন্তব্যের নিন্দা করছেন দেওবন্দ দারুল উলুমের প্রাক্তন ছাত্র থেকে বুদ্ধিজীবি - অনেকেই। উত্তরপ্রদেশের দেওবন্দ শহরে বুধবার একটি সভায় যোগ দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং বলেন, "এই দেওবন্দ সন্ত্রাসবাদের গঙ্গোত্রী। সারা বিশ্বে যত বড় বড় সন্ত্রাসবাদী জন্ম নিয়েছে - যেমন হাফিজ সৈয়দ - এই সব লোক এখান থেকেই বেরয়।" নাম না করলেও তিনি যে ইসলামি শিক্ষার জন্য সারা বিশ্বে পরিচিত দেওবন্দের দার-উল-উলুমের কথাই বলছেন সন্ত্রাসবাদের গঙ্গোত্রী - অর্থাৎ উৎসস্থল হিসাবে, সেটাই মনে করছেন অনেকে। দারুল উলুমের প্রাক্তন ছাত্র এবং এখনও ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। তিনি গিরিরাজ সিংয়ের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বলছিলেন, "দেওবন্দকে যদি সন্ত্রাসবাদী বলা হয়, আমি বলব মি. মোদীর বন্ধু, সৌদি আরবের রাজা সালমান, সেখানকার ইমামদেরকে একথাটা গিয়ে বলুন না একবার। সেখানকার ইমামরা যা শিক্ষা দেন, দেওবন্দও সেই শিক্ষা দেয়। তাহলে সৌদির ইমামরাও সন্ত্রাসবাদী! বুকের পাটা থাকলে একবার সৌদি আরবে গিয়ে বা মক্কা শরিফে গিয়ে বলুন না এই কথাটা!" মি. চৌধুরী মনে করিয়ে দিলেন, যে প্রতিষ্ঠানকে সন্ত্রাসবাদের উৎস বলা হচ্ছে, সেখানে ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ গিয়েছিলেন - কারণ দারুল উলুমের তৎকালীন প্রধান সইফুল ইসলাম হুসেইন আহমেদ মাদানী মি. রাজেন্দ্র প্রসাদের সঙ্গে একই জেলে বন্দী ছিলেন স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে। মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী থেকে শুরু করে সুভাষ চন্দ্র বসু - সকলের সঙ্গেই দেওবন্দের সখ্যতা সুবিদিত। দেওবন্দ 'সন্ত্রাসবাদের গঙ্গোত্রী' - ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা গিরিরাজ সিং। কলকাতায় শিক্ষাবিদ মীরাতুন নাহার বলছিলেন গঙ্গোত্রী শব্দটা সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে এখানে এবং তা সুপরিকল্পিত ভাবে করা হচ্ছে সারা দেশের মানুষের কাছে মুসলমানদের শত্রু প্রতিপন্ন করে তোলার জন্য "গঙ্গোত্রীর মতো একটা শব্দ সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জুড়ে দেওয়াটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। গঙ্গোত্রীর সঙ্গে কোনও খারাপ কাজের সম্পর্ক থাকতে পারে বলেই মনে করি না। তবে এসব কথা কিন্তু মোটেই আলটপকা বলা হচ্ছে না। খুব ভেবে চিন্তেই বলছেন ওঁরা এসব। উদ্দেশ্য একটাই - যাতে সংখ্যালঘুদের সম্পর্কে দেশের মানুষের মন বিষিয়ে দেওয়া যায়," বলছিলেন অধ্যাপিকা মীরাতুন নাহার। বিতর্কিত মন্তব্য করার জন্য গিরিরাজ সিং বহুল চর্চিত। তিনি মাঝে মাঝেই বলে থাকেন যে দেশের উন্নয়ন ঘটাতে হলে সব ধর্মের মানুষদের জন্যই জন্ম নিয়ন্ত্রনের কড়া নিয়ম চালু করা উচিত। ইঙ্গিতটা স্পষ্টতই মুসলমানদের দিকে। এছাড়াও গত বছরের লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি মন্তব্য করেছিলেন যে চামড়ার রঙ ফর্সা না হলে কংগ্রেস দল কখনই সোনিয়া গান্ধীকে দলের সভানেত্রী পদে মেনে নিত না। এই মন্তব্যের জন্য বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে তিনি তিরষ্কৃত হন, যদিও ভোটের পরে তাঁর কার্যত পদোন্নতি ঘটিয়ে ক্যাবিনেট মন্ত্রী করা হয় গিরিরাজ সিংকে। আরো পড়ুন: প্রথা ভেঙে যৌনকর্মীর জানাজা পড়ালেন মসজিদের ইমাম পশ্চিমবঙ্গে 'শত্রু সম্পত্তি' নিলামে তুলছে ভারত সরকার চীন এবং সেই ভাইরাস, যা সবকিছুকেই হুমকিতে ফেলছে অনেকেই মালয়েশিয়া যাচ্ছিলেন বিয়ের পাত্রী হিসেবে সিরিয়াকে হুঁশিয়ার করে দিলেন তুরস্কের এরদোয়ান ইসলামি শিক্ষার অন্যতম পীঠস্থান বলে সারা বিশ্বে পরিচিত যে দেওবন্দ, তাকে সন্ত্রাসবাদের গঙ্গোত্রী, অর্থাৎ উৎসস্থল বলে বর্ণনা করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় পশুপালন ও মৎস দপ্তরের মন্ত্রী গিরিরাজ সিং। +text: ভারত বায়োটেকের উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিয়ে উদ্বে��� দেখা দিয়েছে কোভ্যাক্সিন নামের এই টিকাটিকে ভারতে সরকারি অনুমোদন দেয়া হয় রোববার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এর পর ঘোষণা করেন, এই টিকা হবে এক 'গেম-চেঞ্জার'। কিন্তু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন যে এর অনুমোদন দেবার প্রক্রিয়ায় তাড়াহুড়ো করা হয়েছে। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে নজরদারি করে এমন একটি প্রতিষ্ঠান অল ইন্ডিয়া ড্রাগ এ্যাকশন নেটওয়ার্ক বলেছে, ব্যাপারটায় তারা 'স্তম্ভিত।' প্রতিষ্ঠানটি বলছে, টিকাটি কতটুকু কার্যকর সে ব্যাপারে কোন উপাত্ত নেই এবং এ ব্যাপারে স্বচ্ছতারও অভাব রয়েছে - যা গুরুতর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। "এর ফলে উত্তরের চেয়ে বেশি প্রশ্ন তৈরি হবে এবং বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর আস্থা বাড়বে না। " এই বিবৃতির আগে ভারতের ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল ভি জি সোমানি জোর দিয়ে বলেন, কোভ্যাক্সিন ১০০% নিরাপদ এবং এটা মানবদেহে শক্তিশালী রোগপ্রতিরোধী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তিনি বলেন, ভ্যাকসিনটি সীমিত ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত হয়েছে এবং "এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অন্য সব টিকার মতই - যেমন সামান্য জ্বর, ব্যথা এবং এ্যালার্জি।" কিন্তু অল ইন্ডিয়া ড্রাগ এ্যাকশন নেটওয়ার্ক বলছে, যে ভ্যাকসিনের পরীক্ষা অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে তাকে এভাবে অনুমোদন দেবার বৈজ্ঞানিক যুক্তি তারা বুঝতে পারছেন না। ভারতের অগ্রগণ্য চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের একজন ড. গগনদীপ কাং বলেন, এরকম ঘটনা তিনি আগে কখনো দেখেননি। তিনি বলেন, এ টিকাটির কার্যকারিতা কতখানি সে ব্যাপারে কোন উপাত্তই নেই যা প্রকাশ বা উপস্থাপন করা হয়েছে। জনগণের আস্থা নিয়ে প্রশ্ন সামাজিক মাধ্যমেও অনেকে বলেন যে ট্রায়াল সম্পন্ন হবার আগে টিকা অনুমোদন করে দেয়াটা উদ্বেগজনক - এমনকি পরে যদি এটা কার্যকর বা নিরাপদ বলে প্রমাণিত হয় তাহলেও। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: 'ভারত বায়োটেকের টিকা অনুমোদনে 'বিপজ্জনক তাড়াহুড়ো' - কংগ্রেসের হুঁশিয়ারি ভারতে দেশীয় কোভ্যাক্সিন টিকার অনুমোদন টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা নেই - বিবিসিকে সেরাম ইনস্টিটিউট এই প্রথম শুরু হলো অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়া সামাজিক মাধ্যমেও ভারত বায়োটেকের টিকা অনুমোদন নিয়ে বিতর্ক চলছে দিল্লি থেকে বিবিসির বিকাশ পাণ্ডে জানাচ্ছেন, ভ্যাকসিনটির উদ্ভাবক ভারত বায়োটেক বলছে টিকাটির প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের ট্রায়ালে ভালো ফল পাওয়া গেছে, সরকারি কর্তৃপক্ষও একে নিরাপদ ও কার্যকর বলে মত দিয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, যেহেতু টিকাটির কার্যকারিতার উপাত্তগুলো অন্য বৈজ্ঞানিকদের যাচাই করে দেখার জন্য প্রকাশ করা হয় নি - সেটাই এ উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিকাশ পাণ্ডে বলছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই কোভ্যাক্সিনকে "আত্মনির্ভর ভারতের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত" বলে বর্ণনা করেছেন কিন্তু টিকাটি নিয়ে যে প্রশ্নগুলো উঠছে তা এ প্রচারণার জন্য অনুকুল হবে না। তা ছাড়া অনেকের মতে সরকারকে টিকা অনুমোদনের প্রক্রিয়ার ব্যাপারে আরো স্বচ্ছতা দেখাতে হবে, কারণ কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচির সাফল্য নির্ভর করছে জনগণের আস্থার ওপর। রাজনীতিবিদরাও বিতর্কে জড়িয়েছেন রোববার টুইটারে সরকারের মন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদদের মধ্যে এই কোভ্যাক্সিনকে তড়িঘড়ি করে অনুমোদন দেয়া নিয়ে তীব্র বিতর্ক হয়। ভারত নিজেই এই টিকা তৈরি করেছে কিন্তু এ সাফল্যের প্রশংসা করতে বিরোধী নেতারা ব্যর্থ হয়েছেন বলে তাদের সমালোচনা করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন। কিন্তু যেভাবে এ টিকা অনুমোদন করা হয়েছে তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন শশী থারুর ও জয়রাম রমেশের মত কংগ্রেস-নেতারা, এবং উত্তর প্রদেশ রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। ' ভারতে একটি কোম্পানির তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা ব্যবহারে ট্রায়াল সম্পূর্ণ হবার আগেই যেভাবে সরকারি অনুমোদন দেয়া হয়েছে - তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। +text: ধানের দাম নাই। কিন্তু কৃষি খরচ বেশি। টাঙ্গাইল জেলার ক'দিন আগে একজন কৃষক ক্ষোভ এবং হতাশা থেকে জমিতে পাকা ধানে আগুন লাগিয়ে দেন। দেশে যে বছরই ধানের ফলন ভাল হয়, তখনই ধানের দাম নিয়ে কৃষকরা হতাশায় পড়তে হয়। এই চক্র থেকে বেরিয়ে আসার আদৌ কি কোন উপায় আছে - এই প্রশ্ন এখন উঠছে। উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী এলাকার মোসাম্মৎ বানেশা বেগম অন্যের তিন বিঘা জমি বর্গা নিয়ে বোরো ধান চাষ করেছিলেন। কিন্তু এখন তার শ্রম এবং খরচের তুলনায় ধানের দাম কম হওয়ায় তিনি থমকে গেছেন। "ধানের দাম নাই। কিন্তু কৃষি খরচ বেশি। ১২০০ টাকা দিয়া এক বিঘা ধান কাটাতে কামলা নিতে হয়। পোষায় না।" টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার বানকিনা গ্রামের একজন কৃষক আবদুল সিকদার কয়েকদিন আগে তার জমিতে পাকা ধানে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন। খরচের তুলনায় ধানের দাম কম হওয়ায় ক্ষোভ এবং হতাশা থেকে তিনি এটা করেছিলেন বলে তার পরিবারের একজন সদস্য জানিয়েছেন। বোরো ধান মণপ্রতি এখন কৃষকদের ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। খরচের তুলনায় ধানের দাম কম হওয়ায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। কুড়িগ্রামের একজন কৃষক আজিজার রহমান বলছিলেন, প্রতি বছরই ধানের দাম নিয়ে তাদের হতাশায় পড়তে হচ্ছে। "আমাদের জমিতে ধান ছাড়া অন্য ফসল করা যায় না। এটা ধানী জমি। সে কারণে বাধ্য হয়ে ধান করি।" ধানের দাম বাড়াতে দুই উদ্যোগ - প্রযুক্তি ও রপ্তানী সরকারও এ পরিস্থিতিটা স্বীকার করছে। কৃষিমন্ত্রী ড: আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, এই বছর আমন এবং আউশের উৎপাদন বেশি হয়েছে। এখন বোরো ধানও এক কোটি ৯০ লাখ টনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। ফলন বেশি হওয়ায় ধানের দাম এবার আগের তুলনায় অস্বাভাবিক কম বলে তিনি মনে করেন। আরো পড়ুন: ধান কাটার শ্রমিক সংকট মোকাবিলায় নয়া উদ্যোগ! 'একমণ ধানের দামের চেয়ে একজন শ্রমিকের মজুরি বেশি' ড: রাজ্জাক জানিয়েছেন, তাৎক্ষণিক এবং দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা সরকার নিচ্ছে। তিনি বলেছেন, তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য চাল রপ্তানির বিষয় সরকার সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে। "কৃষক আমন ধানও ভাল দামে বিক্রি করতে পারে নাই এই অস্বাভাবিক হারে দাম কমে গেছে। ইতিমধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হাওর থেকেও ধান কাটা হয়ে গেছে। ফলে স্পষ্ট বোঝা যায়, অনেক ধান উদ্বৃত্ত থাকবে।" "আমরা বেশি কিনতে পারতাম। কিন্তু সরকারি গুদামের ধারণ ক্ষমতা অনেক কম। সেজন্য আমরা ১২ লাখ টন টার্গেট করেছি। তার চেয়ে বেশি কেনা সম্ভব হবে না। আর সাড়ে তিন কোটি টন চালের মার্কেটে ১০ বা ১২ লাখ টন চাল কিনলে এর প্রভাব পড়ে না। এছাড়া কৃষকরা প্রত্যক্ষভাবে এর সুবিধাটা পায় না। ডিলাররা কিনলে তার একটা প্রভাব পড়ে।" মন্ত্রী আরও বলেছেন, "সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে চাল রপ্তানির বিষয় আমরা বিবেচনা করছি।" তবে কৃষি বিষয়ক অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ফলন ভাল হলেই ক্ষুদ্র এবং মাঝারী কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, সেই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রয়োজন। চাতালের জায়গায় অটো রাইস মিলের উত্থান হয়েছে। সরকারি গবেষণা সংস্থা বিআইডিএস-এর গবেষক ড: নাজনীন আহমেদ বলছিলেন, ধান ��াল কেনার প্রচলিত পদ্ধতিতে সরকারের নজরদারি বাড়ানো হলে কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। তবে কৃষকের উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনার জন্য দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর জোর দিলে দীর্ঘমেয়াদে ভাল সমাধান হতে পারে বলে তিনি মনে করেন। "সমস্যা অনেক, যেমন চাতালের জায়গায় অটো রাইস মিলের উত্থান। এর সাথে কৃষকের ফলন ধরে রাখার নিজেদের ব্যবস্থা নেই। ফলে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি কৃষককে ধান কেটেই বিক্রি করতে হয়। তখন তারা দাম কম পায়।" "এখানে সরকার যদি তাদের চাল কেনার প্রক্রিয়া একটু আগে শুরু করে, তাহলে সেখানে ধানের দাম যেটা ঘোষণা করা হবে, সেটা ক্ষুদ্র কৃষকের জন্য একটা বারগেইনিং পয়েন্ট হতে পারে। এটা এখনকার ব্যবস্থায় কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে উৎপাদন খরচ কমাতে কৃষককে প্রযুক্তির দিকে নেয়া ছাড়া বিকল্প নাই।" সরকার অবশ্য কিছুদিন আগে ৩৬ টাকা কেজিতে চাল কেনার ঘোষণা দিয়েছে। আর ধানের দাম ঘোষণা করেছে ২৬ টাকা কেজি। সরকারের এই দাম অনুযায়ী মণপ্রতি ধানের দাম এক হাজার টাকার বেশি হয়। কিন্তু সরকারি কেনার প্রক্রিয়া মাঠ পর্যায়ে এখনও সেভাবে শুরু হয়নি। কৃষি মন্ত্রী ড: আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সরকারও স্থায়ী উপায় হিসেবে প্রযুক্তির ব্যবহারসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে এগুতে চাইছে। "ধান লাগানো এবং ধান কাটার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি খরচ হয়। এই ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য সরকার কৃষককে সহযোগিতা করছে। একটি যন্ত্র কিনতে কৃষক ৫০ টাকা দিলে সরকার বাকি ৫০ টাকা দিচ্ছে। আরও কিভাবে খরচ কমানো যায়, সেই পরিকল্পনা করা হচ্ছে। কিন্তু এটা একদিনে সম্ভব না। অনেক সময় প্রয়োজন।" কৃষি অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সারাদেশের কৃষকদের তালিকা এবং তথ্য সরকারের কাছে আছে। ফলে সরকার কৃষকদের সাথে নিয়ে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গুরুত্ব দিলে অল্প সময়েই স্থায়ী সমাধান সম্ভব হতে পারে। পৃথিবী যে দ্রুতই এগিয়ে যাচ্ছে, তার একটি প্রমান হয়তো বিজ্ঞানের নিত্য-নতুন আবিষ্কার। অন্যান্য খবর: 'ইসরায়েলি' প্রযুক্তি দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে নজরদারি কৃত্রিম মাংসের বার্গার, যা থেকে 'রক্ত' ঝরে গির্জায় গিয়ে কেন আলোচনায় ঘানার ১০০ বছর বয়সী ইমাম বাজারে দাম না পাওয়ায় কৃষকদের মাঝে হাহাকার পড়েছে। সরকার ভাবছে প্রযুক্তির ব্যবহার ও চাল রপ্তানির কথা। +text: মিস্টার হে এবং তার স্ত্রী। এই ট্রাজেডির পর পুলিশ এখন গ্রেফতার করেছে স্বামীকে। তার বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ এনেছে পুলিশ। এই ঘটনাটি চীনের হুনান প্রদেশের শিনহুয়া কাউন্টিতে । সেখানে ৩৪ বছর বয়সী এক লোকের গাড়ি খুঁজে পাওয়া যায় নদীতে। ধারণা করা হচ্ছিল লোকটি দুর্ঘটনায় মারা গেছে। কিন্তু তার দেহ কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পুলিশ এই লোকটির নাম 'হে' বলে উল্লেখ করছে। এভাবে সাজানো গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যুর এই পরিকল্পনা সম্পর্কে লোকটি তার স্ত্রীকে আগে থেকে কিছুই জানায়নি। ফলে স্বামীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর শোকে-দু:খে স্ত্রী দুই সন্তানকে নিয়ে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এর আগে তিনি অনলাইনে একটি 'সুইসাইড নোট' লিখে যান। এই ট্রাজিক ঘটনার পর স্বামী নিজেই গিয়ে ধরা দেন হুনান প্রদেশের পুলিশের হাতে। তার বিরুদ্ধে ইন্স্যুরেন্স প্রতারণা এবং ইচ্ছেকৃতভাবে সম্পদের ক্ষতি করার অভিযোগ এনেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, গত সেপ্টেম্বরে মিস্টার হে নিজের জন্য এক মিলিয়ন ইউয়ানের একটি জীবন বীমা করেন। এটি আবার তিনি নিজের স্ত্রীর কাছে গোপন রেখেছিলেন, যদিও এই বীমার বেনিফিশিয়ারি ছিলেন তার স্ত্রী। গত ১৯ শে সেপ্টেম্বর মিস্টার হে একটি ধার করা গাড়িতে চেপে দুর্ঘটনার নাটক সাজান। এই দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু ঘটেছে এমন একটি ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেন। মিস্টার হে খুব বেশি ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তার নামে এক লাখ ইউয়ানের ঋণ ছিল। চীনে মানুষ কতটা আর্থিক ও পারিবারিক চাপের মধ্যে আছে তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনা চলছে গত ১১ই অক্টোবর মিস্টার হে'র ৩১ বছর বয়সী স্ত্রী তার ৪ এবং ৩ বছর বয়সী দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে আত্মহত্যা করেন। সুইসাইড নোটে তিনি লিখেছিলেন, তিনি স্বামীর সঙ্গী হতে যাচ্ছেন। তার ইচ্ছে তারা চারজন আবার যেন এক সঙ্গে মিলতে পারেন। অন্যান্য খবর: এম জে আকবর: 'মি-টু' আন্দোলনের প্রথম বলি যে কারণে বি চৌধুরীকে রাষ্ট্রপতির পদ ছাড়তে হয়েছিল গাঁজা ও জাস্টিন ট্রুডোর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি স্ত্রী-সন্তানদের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর মুষড়ে পড়েন মিস্টার হে, পরদিনই তিনি ধরা দেন পুলিশের হাতে। এর আগে তিনি অনলাইনে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। এই ভিডিওতে তাকে কাঁদতে কাঁদতে বলতে দেখা যায়, তিনি তার তিন বছর বয়সী মেয়ের চিকিৎসার জন্য ঋণ করেছিলেন। তার মেয়ে এপ��লেপসি রোগে ভুগছিল। এই ভিডিওটি এখন অনলাইনে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ঘটনা নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে। চীনে মানুষ কি পরিমাণ আর্থিক এবং পারিবারিক চাপের মধ্যে আছে, সেটা নিয়ে কথা বলছেন অনেকে। চীনের মাইক্রো-ব্লগিং সাইটে এই ঘটনা সম্পর্কিত হ্যাশট্যাগটি প্রায় তিন কোটি বার দেখা হয়েছে। ইন্স্যুরেন্স জালিয়াতির জন্য স্বামী গাড়ি দুর্ঘটনার নাটক সাজিয়ে রটিয়ে দিয়েছিল নিজের মৃত্যুর খবর। কিন্তু সেই খবর বিশ্বাস করে দুই সন্তান-সহ আত্মহত্যা করেন স্ত্রী। +text: এর আগে লকডাউন ঘোষণার দুদিন পরই যানবাহন, দোকানপাট আবার খুলে দেওয়া শুরু হয়। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, এই সময়ে জরুরি সেবা ছাড়া সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিতসহ সব ধরণের অফিস এবং একই সাথে কল কারখানাও বন্ধ থাকবে। কঠোর লকডাউনের সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। 'কঠোর লকডাউন'-এর সময় আরও বাড়ানো হবে কি-না তা পরে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে, জানান মন্ত্রী। ফরহাদ হোসেন বলেন, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী এই কঠোর লকডাউন দেয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। "যদিও এ লকডাউনকে কার্যকর করার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েনের চিন্তা আপাতত সরকারের নেই, তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে," তিনি আরও বলেন। প্রতিমন্ত্রী জানান, লকডাউন যাতে কার্যকর করা যায়, সেজন্য হতদরিদ্র মানুষদের খাদ্য সহায়তা দেয়ার জন্য ইতোমধ্যে দেশের সব ইউনিয়ন ও উপজেলায় সাড়ে পাঁচশো' কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: লকডাউন অকার্যকর হলে সেনাবাহিনী ও কারফিউর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের বাংলাদেশে লকডাউন 'অকার্যকর' হয়ে পড়ছে দোকানপাট ও শপিং মল খোলার অনুমতি দিলো সরকার বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ আবার বাড়ছে এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, জনস্বার্থে আগামী ১৪ই এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য 'সর্বাত্মক লকডাউন' দেয়ার বিষয়ে সরকার সক্রিয় চিন্তাভাবনা করছে। সরকারের প্রভাবশালী এই মন্ত্রী এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান, যা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। মি. কাদের বলেন, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, এবং ল���ফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার, সঙ্গে বাড়ছে অবহেলা ও উদাসীনতা। "চলমান এক সপ্তাহের লকডাউনে জনগণের উদাসীন মানসিকতার কোন পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয় না। তাই সরকার জনস্বার্থে আগামী ১৪ই এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউনের বিষয়ে সক্রিয় চিন্তাভাবনা করছে," তিনি বলেন। তবে সর্বাত্মক লকডাউন বলতে ঠিক কী বোঝানো হচ্ছে বা সেটির পরিধি কেমন হবে, তা নিয়ে মন্ত্রী কোন মন্তব্য করেননি। দ্বিতীয় দফায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপক ভাবে বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এর আগে গত ৫ই এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এক সপ্তাহের জন্য 'কঠোর বিধিনিষেধ' আরোপ করেছিলো সরকার, যা লকডাউন হিসেবেই পরিচিতি পায়। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সব ধরণের গণপরিবহন ছাড়াও দোকানপাট, শপিং মল বন্ধ থাকার কথা। একই সাথে সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের না হতে বলা হয়েছিল। তবে কলকারখানা, কাঁচাবাজারসহ কিছু প্রয়োজনীয় দোকানপাট খোলা থাকারও সুযোগ রাখা হয়। দোকানপাট খুলছে শুক্রবার থেকে এসব বিধিনিষেধ কার্যকরের আগেই ঢাকা ছাড়ে লাখ লাখ মানুষ। আবার বিভিন্ন জায়গায় বিধিনিষেধ কার্যকর করা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। অন্যদিকে, শুধু গণপরিবহন বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়ে অফিসগামী মানুষ। এমন প্রেক্ষাপটে সরকার বিধিনিষেধ শিথিল করে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয় এবং আজ শুক্রবার থেকে শপিংমল ও দোকানপাট স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলার অনুমতিও দেয়া হয়েছে। এভাবে কার্যত অচল হয়ে পড়ে সব বিধিনিষেধ, আর এরই মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ও এতে মৃত্যুর সংখ্যাও। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যবিভাগ জানিয়েছে যে তার আগের চব্বিশ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা ছিলো এক দিনে এ যাবত কালের সর্বোচ্চ - ৭৪ জন। এছাড়া, প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছে নতুন করে ৬/৭ হাজার মানুষ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজেই এ অবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন সবাই সচেতন না হলে পুরো শহরকে হাসপাতাল বানালেও রোগীর জায়গা দেয়া সম্ভব হবে না। পরিস্থিতি মোকাবেলায় চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা সর্বাত্মক লকডাউন আরোপ এবং এক্ষেত্রে প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর সহায়তা নেয়া বা রাত্রিকালীন কারফিউ দেয়ার মতো সিদ্ধান্ত নেয়ারও পরামর্শ দিয়ে আসছেন। ওদিকে সরকারের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত যে জাতীয় কমিটি রয়েছে, তারাও পরিস্থিতিকে স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচনা করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে। এর মধ্যেই আজ মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ১৪ই এপ্রিল থেকে সর্বাত্মক লকডাউন আরোপের ইঙ্গিত দিলেন। বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারেন: নতুন উপসর্গ নিয়ে যেসব চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে আফ্রিকান ভ্যারিয়ান্ট কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় আলোচনায় কাদের মির্জা: সাধারণ সম্পাদকের ভাই, নাকি 'সত্যবচন'? সরকারি দায়িত্বে থেকে উপহার গ্রহণের নিয়ম কী বাংলাদেশের জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন যে আগামী ১৪ই এপ্রিল থেকে পুরোদেশে সাত দিনের 'কঠোর লকডাউন' শুরু হবে। +text: উত্তর কোরিয়া কোন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালালে সবচেয়ে নাখোশ হবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সানুমডং নামে পরিচিত একটি স্থাপনার কাছে গত কয়েকদিন ধরে তৎপরতা বেড়ে যেতেও দেখা গেছে, যেখানে উত্তর কোরিয়া তার বেশিরভাগ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট জড়ো করেছে। উত্তর কোরিয়ায় রকেট নিক্ষেপের মূল স্থানটি পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের দুটো গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে একথা বলার পরই অস্ত্র বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে স্থাপনায় দেশটি সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট মজুদ করেছে, তাকে কেন্দ্র করে তৎপরতাও বেড়ে গেছে। রাজধানী পিয়ংইয়াং-এর কাছে এই স্থাপনাটি সানুমডং নামে পরিচিত। স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতে দেখা গেছে, এই স্থাপনাটির আশেপাশে বড় বড় যান চলাচল করছে। এর আগেও এরকম পরিস্থিতিতে বোঝা গেছে যে দেশটি উৎক্ষেপণের জন্যে সেখানে ক্ষেপণাস্ত্র কিংবা রকেট জড়ো করছে। সোহায়ে-তে উত্তর কোরিয়ার বিতর্কিত স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র। আরো পড়তে পারেন: ব্যালট বাক্স আগেই ভরা নিয়ে বিতর্ক ফেসবুকে প্রাইভেসি: জাকারবার্গের নতুন পরিকল্পনা 'আইএস বধূ' শামীমা বেগমের শিশু সন্তানটি মারা গেছে সৌল থেকে বিবিসির সংবাদদাতা লরা বিকার বলছেন, রকেট নিক্ষেপের জন্যে উত্তর কোরিয়ার প্রধান যে স্থাপনা সেটিও নতুন করে পুনর্গঠন করা হয়েছে বলে বিশ্লেষকরা দাবি করেছেন। বলা হচ্ছে, যে কোনো সময়ে এখান থেকে পরীক্ষামূলকভ��বে রকেট কিম্বা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হতে পারে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, তারা ধারণা করছেন যে এই মুহূর্তে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নয়, বরং উপগ্রহ উৎক্ষেপণের জন্যেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তারপরেও এটা হবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দেওয়া উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং আনের প্রতিশ্রুতির লঙ্ঘন। গত সপ্তাহে এই দুই নেতার মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকও ব্যর্থ হয়েছে। তবে উত্তর কোরিয়ার জনগণকে এই খবরটি বহু পরে দেওয়া হয়েছে যে ওই বৈঠকে শেষ পর্যন্ত কোন সমঝোতা হয়নি। দু'হাজার সতের সালের পর থেকে উত্তর কোরিয়া কোন ধরনের পরমাণু কিম্বা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো থেকে বিরত রয়েছে। স্যাটেলাইট থেকে তোলা উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়াং-এর আশেপাশের কিছু ছবি দেখে মনে হচ্ছে দেশটি হয়তো ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ কিম্বা উপগ্রহ উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। +text: নাঙ্গারহার প্রদেশে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর টহল সংবাদ মাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন বিশ্লেষকরা বলছেন, মোল্লা বারাদার যে এ আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন এতেই মনে করা চলে যে - এতদিন থেমে-থেমে চলতে থাকা শান্তি প্রক্রিয়ায় এবার কিছু অগ্রগতি হলেও হতে পারে। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবরে জানা যাচ্ছে, মার্কিন কর্মকর্তারা মেনে নিয়েছেন যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার করা হবে। আর তালেবান রাজী হয়েছে যে তারা আল-কায়েদা এবং ইসলামিক স্টেটকে প্রতিহত করবে - যেন তারা বিদেশী বাহিনীর ওপর আক্রমণ চালাতে না পারে। মোল্লা বারাদার গত বছর পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পাবার পর গত শুক্রবাই তালেবানের 'রাজনৈতিক বিষয়ক নেতা'র পদে নিযুক্ত হন। তার আলোচনায় তার উপস্থিতির ফলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ দ্রুততর হবে বলে সবাই আশা করছেন। আফগানিস্তানে সংঘাত অবসানের লক্ষ্যে কাতারে ছয়দিন দিন ধরে এই আলোচনা চলছে, যাতে আরো যোগ দিয়েছেন বিশেষ মার্কিন দূত জালমে খলিলজাদ। কে এই মোল্লা বারাদার? মোল্লা আবদুল গনি বারাদার তালেবান আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন এবং তাদের রহস্যময় সাবেক নেতা মোল্লা ওমরের একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু। মোল্লা ওমরই নাকি তাকে 'বারাদার' এই ছদ্মনাম দিয়েছিলেন - যার অর্থ বেরাদর বা ভাই। তিনি ছিলেন দক্ষিণ আফগানিস্তানে তালেবানর সামরিক কর্মকান্ডের অধিনায়ক। তার বয়স এখন ৫০-এর কোঠায় বলে ধারণা করা হয়। তাল���বান এখন আফগানিস্তানের অর্ধেক ভূখন্ড নিয়ন্ত্রণ করে ২০১০ সালে পাকিস্তান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর একটি বিশেষ দল তাকে গ্রেফতার করে। এর পর থেকেই তিনি বন্দী ছিলেন এবং মাত্র গত বছরই অক্টোবর মাসে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পান। তখন শোনা গিয়েছিল যে তার স্বাস্থ্য ভালো নয়, এবং তালেবানের নেতৃত্ব দানকারী কাউন্সিলে যোগ দেবার আগে তাকে বিশ্রাম নিতে হবে। পাকিস্তানে বন্দীদশায় থাকার সময় তাকে প্রায়ই ওষুধ দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হতো বলে তার সাথে দেখা করতে যাওয়া লোকেরা টের পেয়েছেন। তালেবান প্রায় প্রতিদিনই পশ্চিমা জোট সমর্থিত আফগান সরকার এবং তাদের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে। তারা আফগানিস্তানের প্রায় অর্ধেক ভূখন্ড নিয়ন্ত্রণ করে, এবং বলা হয় যে ২০০১ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন অভিযানে ক্ষমতাচ্যুত হবার পর এখনই তারা সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী। সুইৎজারল্যান্ডের দাভোসে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি গত সপ্তাহেই বলেন ২০১৪ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট হবার পর থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর ৪৫ হাজার সদস্য নিহত হয়েছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: আলোচনায় কি শান্তি ফিরবে আফগানিস্তানে? তালেবানকে কীভাবে শান্তি আলোচনায় বসালো রাশিয়া আফগানিস্তান কেন এখন আগের চাইতেও বিপজ্জনক? গত কয়েক বছরে তালেবান আক্রমণে ৪৫ হাজার আফগান নিরাপত্তা বাহিনী সদস্য নিহত হয়েছে এই আলোচনা কি ফলপ্রসূ হবে? সংবাদ সংস্থাগুলো জানাচ্ছে, আমেরিকানরা এই গ্যারান্টি চাইছে যে আফগানিস্তান যেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী আক্রমণ চালানোর জন্য আফগানিস্তানকে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে। একজন উর্ধতন তালেবান নেতা বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এ আশ্বাস তালেবান দিয়েছে যে তারা সন্ত্রাসী আক্রমণের জন্য আফগানিস্তানকে ব্যবহারের জন্য জঙ্গীদের যে কোন চেষ্টার বিরোধিতা করবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতা বলেন, তারা ইসলামিক স্টেটের সাথে যোগাযোগ ছিন্ন করতে ইচ্ছুক কিন্তু আল-কায়েদার সাথে নয় - কারণ তারা তালেবান নেতা শেখ হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদাকে তাদেরও নেতা বলে মনে করে। সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, এর আগে আল-কায়েদার সাথে সম্পর্ক ছেদ করতে তালেবান অস্বীকার করেছিল - যা নিয়ে বিতর্কের সময় কাতারের এ বৈঠকে তালেবান প্রতিনিধিরা একবার ওয়াকআউটও করেন। অন্যদিকে, আফগান সরকারের সাথে তালেবান কথা বলতে রাজী নয় । পশ্চিমা এবং আফগান কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, মোল্লা বারাদারকে প্রধান আলোচক হিসেবে এ আলোচনায় নিয়ে এসে আলেবান ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা একে 'সিরিয়াস' ভাবে নিচ্ছে - এতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া দ্রুততর হবে। তালেবান নেতারা কিছু দিন আগে মস্কোয় এক শান্তি আলোচনায় যোগ দেন কারণ মোল্লা বারাদার তালেবানের একজন শীর্ষ নেতা এবং একজন 'বাস্তববাদী', - তিনি এমন এক ব্যক্তি যার সিদ্ধান্ত সংগঠনের অন্যেরা মেনে নেবে। একজন তালেবান কমান্ডার আবদুল রহমানও নিউইয়র্ক টাইমসের মুজিব মাশালকে এ কথা বলেছেন। এর আগে এই শান্তি আলোচনায় তালেবান প্রতিনিধি পাঠানো নিয়ে কিছু হাস্যকর ঘটনা ঘটেছিল। ২০১০ সালে আলোচনায় যাকে তালেবানের দু'নম্বর নেতা মোল্লা আখতার মোহাম্মদ মনসুর সাজিয়ে পাঠানো হয়েছিল - সে আসলে ছিল কোয়েটা শহরের এক দোকানদার। ২০১৫ সালে আফগান কর্মকর্তাদের সাথে পাকিস্তানের এক শহরে তালেবান 'প্রতিনিধিদলের' বৈঠক হয়। বলা হয়েছিল যে এই দলটি তালেবান নেতা মোল্লা ওমরের প্রতিনিধিত্ব করছে । কিন্তু কয়েকদিন পরই খবর বেরোয় যে মোল্লা ওমর বেশ কয়েক বছর আগেই মারা গেছেন। মোল্লা বারাদারির আলোচনার টেবিলে আসাকে এসব কারণেই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আফগান তালেবানের নতুন রাজনৈতিক নেতা মোল্লা আবদুল গনি বারাদার আজ কাতারে মার্কিন কর্মকর্তাদের সাথে এক বৈঠকে যোগ দিয়েছেন - যাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে । +text: নিদা খান, তিন তালাকের শিকার। বেরিলির গৃহবধূ শাহবিনাকে তার স্বামী তিন তালাক দেওয়ার পর হিল্লাহ্‌ বিয়ের মাধ্যমে তার শ্বশুরের সঙ্গে এক রাতের জন্য শুতে বাধ্য করা হয়েছিল - যাতে তিনি নিজের স্বামীকে আবার বিয়ে করতে পারেন। কিন্তু সেই স্বামী আবার তাকে তালাক দিলে যখন তাকে বলা হয় দেবরের সঙ্গে রাত কাটালে তবেই তিনি আবার স্বামীকে বিয়ে করতে পারবেন, তখন শাহবিনা প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। দেবরের সঙ্গে শুতে না-চাওয়ায় তাকে বাড়ি থেকেও বের করে দেওয়া হয়। শাহবিনা এরপর যোগাযোগ করেন লখনৌতে 'আলা হজরত হেল্পিং সোসাইটি'র প্রতিষ্ঠাতা নিদা খানের সঙ্গে - যার জীবনের অভিজ্ঞতাও প্রায় একই রকম। নিদা খানের বিয়ে হয়েছিল উত্তরপ্রদেশের একটি অভিজাত মুসলিম পরিবারের সন্তান উসমান রেজা খানের সঙ্গে। কিন্তু ২০১৬ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। নিদা খান তার স্বামীর দেওয়া তিন তালাকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আদালতে যান আর সেই মামলাও জেতেন। পার্সোনাল ল-তে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে ভারতের মুম্বাইতে মুসলিমদের বিক্ষোভ সমাবেশ (ফাইল চিত্র) আরও পড়তে পারেন: 'কোরান পড়ে বুঝেছি, তিন তালাকে তা সম্মতি দেয় না' তিন তালাক: বাংলাদেশের আইন কী বলে? উদ্ধার হওয়ার পর হাসপাতাল ছেড়েছে থাই কিশোররা আদালতে তিনি বলেছিলেন, তার স্বামী এত শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করতেন যে তার গর্ভপাতও হয়ে গিয়েছিল। বিবাহ-বিচ্ছিন্না নিদা খান অবশ্য তার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। নিজের এনজিও তৈরি করে তিনি তিন তালাক ও নিকা হালালের ভিক্টিমদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন - আর বেরিলির শাহবিনার পাশে দাঁড়াতেও তিনি এগিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু এর পরই সোমবার বেরিলির শহর ইমাম মুফতি খুরশিদ আলম নিদা খান ও শাহবিনা - দুজনের বিরুদ্ধেই ফতোয়া জারি করে প্রকাশ্য বিবৃতি দিয়েছেন, যাতে বলা হয়েছে ইসলামকে অপমান করার জন্য তাদের ধর্ম থেকে বিতাড়িত করা হচ্ছে। "নিদা খান অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কোনও ওষুধ দেওয়া যাবে না। সে মারা গেলে তার জন্য কেউ নামাজ পড়বে না, কেউ তার জানাজায় যেতে পারবে না," বলা হয়েছে ওই ফতোয়ায়, "এমন কী, কবরস্থানেও তাকে দাফন করা যাবে না। যারা তাকে সমর্থন করবে বা তার পাশে দাঁড়াবে, তাদেরও ঠিক এই একই শাস্তি হবে।" দারুল উলুম দেওবন্দের স্বীকৃত দারুল ইফতা ওই ফতোয়া জারি করার পর থেকেই শাহবিনা ও নিদা খানকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করেছেন। পাঁচ ব্যক্তির বিরুদ্ধে তারা একটি এফআইআর-ও দায়ের করেছেন। বেরিলির পুলিশ প্রধান অভিনন্দন সিং জানিয়েছেন, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তারা তদন্তও শুরু করেছেন। নিদা খান নিজে অবশ্য দাবি করেছেন এই সব হুমকি-ধমকিকে তিনি মোটেই ভয় পাচ্ছেন না। "যারা এই সব ফতোয়া দিচ্ছে তারা পাকিস্তানে গিয়ে ওসব করুক, এ দেশে ওসবের ঠাঁই হবে না। আর আমাদের ইসলাম থেকে বের করে দেওয়ার অধিকারও কারও নেই", বলেছেন তিনি। তিন তালাকের বিরুদ্ধে একটি বিল এখন ভারতের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বিবেচনাধীন আছে। নিকা হালালা বা হিল্লাহ্‌ বিয়ে প্রথার বিরুদ্ধে একটি আবেদনের শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টেও। এদিকে গত কয়েক মাস�� শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশের বেরিলিতেই অন্তত ৩৫টি তিন তালাক ও নিকা হালালার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ভারতের উত্তরপ্রদেশে ইসলাম ধর্মের তিন তালাক ও 'নিকা হালালা' বা হিল্লাহ্‌ বিয়ের প্রথার শিকার দুজন মুসলিম নারীর বিরুদ্ধে ধর্মীয় নেতারা ফতোয়া জারি করার পর তারা রুখে দাঁড়িয়ে বলেছেন ইসলাম থেকে তাদের বের করার অধিকার কারও নেই। +text: শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পুরো পরিবার হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতির গতিপথ বদলে দিয়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড পরবর্তী ঘটনাবলী নিয়ে গবেষণা করেছেন গবেষক এবং লেখক মোহাম্মদ শামসুল হক। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নভাবে অনেক প্রতিবাদ এবং সংগঠিত প্রতিরোধের চেষ্টা হয়েছিল। এর মধ্যে চট্টগ্রামের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধকে তৎকালীন সরকার 'চট্টগ্রাম ষড়যন্ত্র' হিসেবে বর্ণনা করেছিল। 'ইতিহাসের খসড়া' নামের একটি সাময়িকীর সম্পাদক ও লেখক-গবেষক শামসুল হক বিবিসি বাংলাকে জানান, অগাস্ট মাসেই চট্টগ্রামে সিটি কলেজের কিছু শিক্ষার্থী প্রতিবাদ করে মিছিল করার চেষ্টা করে। "সিটি কলেজ থেকে ছাত্ররা একটি মিছিল বের করে, যা পুলিশ ছত্রভঙ্গ করে দেয়।" "পরে শিল্পী সদরুল পাশার বাড়িতে একটি বৈঠক হয়, যেখানে সে সময়কার আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকজন চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র আক্রমণ করার পরিকল্পনা করেছিলেন।" তবে ঐ আক্রমণ সফলতা নিয়ে সন্দেহ থাকায় সে সময় তাদের প্রতিহত করেছিলেন বয়োজেষ্ঠ্যরা। মি. হক বলেন, পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মৌলভী সৈয়দ, তৎকালীন ছাত্রনেতা মহিউদ্দিন চৌধুরী (পরবর্তীতে চট্টগ্রামের মেয়র) এবং পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা হওয়া এস.এম. ইউসুফ তাদের অনুসারীদের নিয়ে প্রতিরোধ প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন। আরো পড়তে পারেন: ৭৫-এর পর যেভাবে বেড়েছে ভিভিআইপি নিরাপত্তা 'আস্থাহীনতার রাজনীতির সূত্রপাত ১৫ই অগাস্ট থেকে' শেখ মুজিব হত্যার পর জেনারেল জিয়া যে মন্তব্য করেছিলেন শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডে যেমনটা ছিল ভারতের প্রতিক্রিয়া যেভাবে পিতার হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জেনেছিলেন হাসিনা পরিবারসহ শেখ মুজিবুর রহমান প্রতিরোধ প্রক্রিয়া পরিচালনার ক্ষেত্রে তাদের দুই ধরণের চিন্তা ছিল বলে মন্তব্য করেন গবেষক শামসুল হক। "সারাদেশের সাংসদদের একটি বড় অংশ সংগঠিত করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরকার বিরোধী কর্মকান্ড পরিচালনা করে সরকারের কার্যক্রমে বড় বাধা তৈরি করার পরিকল্পনা ছিল তাদের।" "আর দ্বিতীয়ত, ভারতে গিয়ে সেখানকার সরকারের সহযোগিতায় বাংলাদেশের সাংসদদের নিয়ে বিকল্প সরকার তৈরি করার বিষয়েও চিন্তা করেছিলেন তারা।" মামলায় কী অভিযোগ করেছিল তৎকালীন সরকার? 'চট্টগ্রাম ষড়যন্ত্র মামলা'র আওতায় যাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল তাদের আট থেকে নয়জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন শামসুল হক। "মামলাটির নাম চট্টগ্রাম ষড়যন্ত্র মামলা হলেও তাদের মূলত জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল তারা অস্ত্র কোথায় লুকিয়ে রেখেছিল এবং মুজিব হত্যার প্রতিবাদে কী কী নাশকতা করার পরিকল্পনা ছিল তাদের?" "আরেকটি বিষয় জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্ব পায়, সেটি হলো তারা ভারতের সহায়তায় কী করার পরিকল্পনা করছিলেন।" কেন সফল হলো না পরিকল্পনা? শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার প্রতিবাদে ভারতের সহায়তায় সরকার বিরোধীরা যে আন্দোলন তৈরি করতে চেয়েছিলেন তা পরবর্তীতে সফল হয়নি। "মৌলভি সৈয়দ যখন ভারতে ছিলেন তখন তার সাথে কাদের সিদ্দিকী এবং মহিউদ্দিন আহমেদের যোগাযোগ হয়।" "কিন্তু ইন্দিরা গান্ধী সরকারের যখন পতন হয় তখন ভারতে এক ধরণের থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল", বলেন মি. হক। জিয়াউর রহমান এরপর মোরারজি দেসাইয়ের নেতৃত্বে ভারতে সরকার গঠন হওয়ার পর জিয়াউর রহমান সরকারের সাথে তাদের এক ধরণের সমঝোতা হয় বলে মন্তব্য করেন শামসুল হক। "ঐ সমঝোতার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম ষড়যন্ত্র মামলার শীর্ষ আসামীদের আশ্রয় দিতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত।" তাদের বলা হয়, ১৯৭৫ পূর্ববর্তী বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আর ঐ সময়ের আন্ত:রাষ্ট্রীয় সম্পর্কে পার্থক্য রয়েছে। ঐ কারণে ভারতে আশ্রয় নেয়া বিদ্রোহকারীদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে চায় ভারত। মি. হক জানান, "মৌলভি সৈয়দকে তার আরো কয়েকজন সহকারীসহ ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশ ব্যাক করানো হয়।" "পরবর্তীতে মৌলভি সৈয়দকে সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর করা হয় এবং তাকে সেনাবাহিনীর ইন্টারোগেশন সেল- এ নিয়ে প্রচন্ড নির্যাতন করা হয়।" এরপর চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে মৌলভি সৈয়দের বাবাকে নিয়ে এসে তাকে সনাক্ত করে সেনাবাহিনী। লেখক মি: হক বলেন, "স��নাবাহিনীর নির্যাতনের মুখেই মৌলভি সৈয়দের মৃত্যু হয়। এসব কারণেই শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার বিরুদ্ধে তাদের আন্দোলন শেষপর্যন্ত সফলতা লাভ করেনি।" বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ই অগাস্ট যখন সপরিবারে হত্যা করা হয়, তখন কেন সে রকম সরব প্রতিবাদ হয়নি, এ নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। +text: সেদেশে বেড়াতে যাওয়া এই ছাত্রকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে হাজতে পাঠায় এবং পরে ব্রিটিশ সরকারের ব্যাপক হস্তক্ষেপের পর ওই ছাত্রকে প্রেসিডেন্ট ক্ষমাপ্রদর্শন করেন এবং সে জেল থেকে মু্ক্তি পায়। এখন ব্রিটেনের আরেকটি পরিবার জানিয়েছে, তাদের পরিবারের ১৯ বছর বয়স্ক এক সদস্যকে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে মিশরে আটক করা হয়েছে। এ দুটি ঘটনা যদিও বেড়াতে গিয়ে আইনভাঙ্গার বা সাজা খাটার চরম দুটি দৃষ্টান্ত, কিন্তু যারা বিদেশে বেড়াতে যায়, বলা হচ্ছে তাদের জন্য স্থানীয় আইন কানুন এবং আচার সম্পর্কে জানা খুবই জরুরি। প্রসঙ্গত, ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দপ্তর এ বছরের গোড়ার দিকে ব্রিটেন থেকে যারা বিদেশ বেড়াতে যায় তাদের পরামর্শ দিয়েছে কোনো দেশ ভ্রমণের আগে সে দেশ সম্পর্কে যথাযথ গবেষণা করে যেতে। তাদের পরামর্শ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিখ্যাত ব্যক্তিরা যখন বেড়াতে গিয়ে দারুণ আকর্ষণীয় সব ছবি তুলে বিভিন্ন মাধ্যমে পোস্ট করেন, তখন অনেক মানুষই ওইসব আকর্ষণীয় জায়গায় বেড়াতে যেতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারেন: ঐক্যফ্রন্ট জিতলে প্রধানমন্ত্রী হবেন কে? 'গুজব রোধে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ করা হতে পারে' ইউটিউবে ১৭৬ কোটি টাকা আয় সাত বছরের রায়ানের কাজেই বিদেশে গিয়ে ঝামেলায় যাতে না পড়েন, নিরাপদে থাকতে পারেন, তার জন্য বিবিসি তৈরি করেছে এই পরামর্শগুলো। থাইল্যাণ্ডে গিয়ে টাকার ওপর পাড়া দেবেন না থাইল্যাণ্ডে রাজার ছবি খুবই গুরুত্বপূর্ণ থাইল্যাণ্ডে রাজতন্ত্রকে অপমান করার বিরুদ্ধে যে আইন রয়েছে তা খুবই পুরোন এবং বিশ্বের অন্যতম সবচেয়ে কঠোর আইন। এই আইন অনুযায়ী থাই রাজপরিবারের কারো ছবিকে অপমান করা গুরুতর অপরাধ। যেহেতু ব্যাঙ্কনোটের ওপর রাজার ছবি রয়েছে, তাই থাই নোট পা দিয়ে মাড়ালে বা কারো পায়ের তলায় পড়লে আপনাকে সোজা হাজতে পাঠানো হবে। চুয়িং গাম নিষিদ্ধ চুয়িং গামের কারণে জেল খাটতে পানে থাইল্যাণ্ডে মেঝেতে চুয়িং গাম ছুঁড়ে ফেলা অপরাধ। এ অপরাধের সাজা ৪০০ পাউণ্ড সমমূল্যের জরিমানা এবং অনাদায়ে সম্ভবত কারাবাস। চুয়িং গাম নিয়ে সিঙ্গাপুরেও রয়েছে কড়া আইন। সেখানে ব্যতিক্রম শুধু মাড়ির চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত গাম অথবা ধূমপান বন্ধ করার জন্য চিবানোর গাম। এই দুই ধরনের গাম ছাড়া সিঙ্গাপুরে কোনধরনের চুয়িং গাম কেনাবেচা নিষিদ্ধ। শহরে সাঁতারের পোশাক নিষিদ্ধ স্পেনের বার্সেলোনা শহরে সমুদ্র সৈকতের বাইরে জনসমক্ষে সাঁতারের স্বল্পবাস পরে ঘুরে বেড়ানো আইনত নিষিদ্ধ করা হয়েছে ২০১১ সালে। শহরের বিভিন্ন স্থানে বিদেশি পর্যটকরা সাঁতার কাটার স্বল্প বাস পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে এ নিয়ে স্থানীয় মানুষ প্রচারাভিযান চালানোর পর এই আইন চালু করা হয়েছিল। কাজেই অর্ধ-নগ্ন হয়ে কেউ ঘুরে বেড়ালে তাকে প্রায় ১০০ পাউণ্ড সমমূল্যের জরিমানা দিতে হবে। সমুদ্রে প্রস্রাব করবেন না পর্তুগালে সাগরে প্রস্রাব করবেন না। এটা আইন বিরুদ্ধ। যদিও সমুদ্রের পানিতে থাকা অবস্থায় কেউ প্রস্রাব করলে তা কীভাবে ধরা যাবে এবং কীভাবে তার বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করা যাবে তা স্পষ্ট নয়। তবে প্রস্রাবের জন্য টয়লেট ব্যবহার করাই আইনের ফাঁদে না পড়ার শ্রেষ্ঠ উপায়। কীধরনের ওষুধ আপনার সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন? উত্তেজক ওষুধের বিরুদ্ধে জাপানে আইন অত্যন্ত কঠোর। ফলে ঠাণ্ডা লাগার কারণে যেসব ওষুধ নাক বা মুখ দিয়ে টেনে ভেতরে নিতে হয় অর্থাৎ ''ইনহেল'' করতে হয়, সেধরনের ওষুধ নিয়ে জাপানে খুব সতর্ক থাকা দরকার। জাপানে ঢোকার সময় এধরনের ওষুধ সঙ্গে থাকলে সাবধান। এর ব্যবহার নিয়ে কোনরকম সন্দেহ হলে আপনাকে আটকানো হতে পারে এবং ওষুধ জব্দ করা হতে পারে। সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে স্পেন, সংযুক্ত আরব আমীরাত, ফ্রান্স, থাইল্যাণ্ড এবং আমেরিকা - এই পাঁচটি দেশ সম্পর্কে ব্রিটিশ সরকার সম্প্রতি পরামর্শ জারি করেছে। কারণ ২০১৬ থেকে ২০১৭র এপ্রিল পর্যন্ত এক বছরে আইনের জাঁতাকলে পড়ে গ্রেপ্তার হয়েছে ব্রিটেনের ৮২৯জন। বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারেন: নির্বাচনী আইন কি স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিপক্ষে যাচ্ছে? ভারতে গো-রক্ষকদের হাতে খুন হলেন পুলিশ কর্মকর্তা জিনগত পরিবর্তন-ঘটানো মানবশিশু তৈরি করা কি উচিত? সম্প্রতি ব্রিটিশ একজন ছাত্র ম্যাথিউ হেজেসকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে কারাবাস করতে হয়েছে। +text: বিসিবি অফিসে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন নাজমুল হাসান সেখানে ম্যাচ নিয়ে ক্রিকেটারদের সঙ্গে নানান কথা হয়েছে বলে জানান তিনি। ''টেস্ট ম্যাচটা আমরা হেরে গেছি তাই সিনিয়র ক্রিকেটারদের সাথে বসেছি, আজ আরো অনেকের সাথে কথা হল। আপনারা অনেকে ভাবছেন শেষ হয়ে গেছে, আমি বিশ্বাস করি না"। "ওদের বলেছি, এরকম কষ্ট আমরা আগেও পেয়েছি, তবে এটাই সবচেয়ে কষ্টের না, এখনো আমার সবচেয়ে কষ্ট লাগে বিশ্বকাপে ভারতের কাছে হারা ২ রান বাকি ছিল, এছাড়া নিদাহাস ট্রফি আর এশিয়া কাপের ফাইনালে হারাও কষ্টের ছিল। তবে এই হার নিয়ে এতো কিছু বলার নেই। কিছুই শেষ হয়ে যায়নি'' দুপুরে মিরপুরে বিসিবি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলছিলেন মি. হাসান। চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের টেস্ট ম্যাচ চলাকালেও একবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মি. হাসান। সেসময় দলের পারফরম্যান্সে নিজের ক্ষোভ জানিয়ে দলীয় পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। ওদিকে চটগ্রামে ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে নিজের হতাশা গোপন করেননি সাকিব আল হাসানও। নিজের অধিনায়কত্ব নিয়ে খুব একটা আগ্রহী নন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। তবে বিসিবি সভাপতির ব্যাখ্যা, ''ওর টেস্টের ব্যাপারে আগ্রহ খুব একটা নেই, বাইরে যখন দল যাচ্ছিলো, তখনও বিশ্রাম চাচ্ছিলো। অধিনায়ক হলে তো টেস্ট খেলতেই হবে। আমাদের হাতে যা অপশন আছে তাতে সেই সেরা। সাকিব আমাদের সাথে বললে সরাসরি কথা বলবো, মনটন তো খারাপ হয়ই।'' প্রশ্ন উঠেছে দলের তরুণদের পারফরম্যান্স নিয়ে। ধারাবাহিক ব্যর্থতার পরও অনেকে খেলে যাচ্ছেন দলে। ''সৌম্য, লিটন টেস্টের জন্য না, তামিম নাই, ইমরুল বাচ্চার অসুস্থতার জন্য ছুটিতে গেছে তাই ওরা খেলেছে, এখন পরিস্থিতি বুঝতে হবে"। আপনারা আমাদের ছেলেদের অনেক আন্ডারএস্টিমেট করেন, এতো খারাপ ওরা না।।'' বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: ব্রিটেনে শিক্ষার্থীদের অভিবাসনের নিয়ম ফের পরিবর্তন যাদের মতে টুইন টাওয়ার বিমানের আঘাতে ভাঙেনি আফগানিস্তানের সাথে চট্টগ্রামে একমাত্র টেস্টে হারের পর চারিদিকে যখন ক্রিকেটারদের ব্যর্থতা নিয়ে সমালোচনা চলছে, এরকম এক প্রেক্ষাপটে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ফেরা দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের মঙ্গলবার রাতে নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়েছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। +text: বাংলাদেশ থেকে যাওয়া একটি বড় সংখ্যক শ্রমিক মধ্যপ্রা��্যের দেশগুলোয় কাজ করেন। এমন অবস্থায় আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তাদের আয়ের ওপর নির্ভরশীল পরিবারগুলো। সৌদি আরবের রিয়াদ শহরের একটি স্যালনে গত আড়াই বছর ধরে কাজ করতেন বিধান চন্দ্র শর্মা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সৌদি আরব সরকার লকডাউন ঘোষণা পর পর সবার আগে স্যালনগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। এমন অবস্থায় তিন মাস ধরে কর্মহীন হয়ে আছেন তিনি। দেশে টাকা পাঠানো দূরে থাক। তিন বেলা খাওয়ার মতো টাকাও এখন তার কাছে নেই। কবে চাকরি পাবেন সেটা নিয়েও অনিশ্চয়তায় আছেন তার মতো এমন অসংখ্য শ্রমিক। মি. শর্মা বলেন "দোকান বন্ধ মানে চাকরি নাই। মালিকেও খোঁজ খবর নেয় না। এম্বাসির সাথেও যোগাযোগ করতে পারতেসি না। খুব কষ্ট করে খাইতেসি।" মি. শর্মার পাঠানো টাকার ওপর নির্ভর করে চলে বাংলাদেশে থাকা তার আট সদস্যের পরিবার। গত দুই মাস কোন টাকা না পাঠানোয় এই পরিবারটিও তীব্র অভাব অনটনের মুখে পড়েছে। স্বামী চাকরি হারানোয় সামনের দিনগুলো কিভাবে চলবেন সেটাই ভেবে পাচ্ছেন না স্ত্রী শুক্লা রানী শীল। "আমার শাশুড়ির চিকিৎসা আমাদের খাওয়া দাওয়া সব আমার স্বামীর টাকায় চলে। আমার ভাসুরও বেকার। আজকে তিন মাস স্বামী কোন টাকা পাঠাইতে পারে না, ফ্যামিলি চালাইতে পারে না। ধারকর্য করে চলতেসি।" লকডাউনের কী প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের শ্রমবাজারের ওপর? করোনাভাইরাস: 'দেশে হাত পাততে পারতেছি না, বলতেও পারতেছি না' যে সাত ধরনের মানুষ ভুয়া তথ্য ছড়ায় বাংলাদেশে কোন জেলায় কতজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত কেন করোনাভাইরাসে বেশি মারা যাচ্ছে কৃষ্ণাঙ্গ ও এশিয়রা মৃত্যুর মুখ থেকে ফেরা এক বাংলাদেশি ডাক্তারের অভিজ্ঞতা প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য মতে, বিশ্বের ১৬৯টি দেশে বাংলাদেশের ১ কোটি ২০ লাখের মতো শ্রমিক রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশই মধ্যপ্রাচ্যের ৬টি দেশে থাকে। এই দেশগুলোয় গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে লকডাউন চলায় তাদের তেল-নির্ভর অর্থনীতি এক প্রকার স্থবির হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে চাকরি থেকে ছাঁটাই করে দেশে ফিরে যেতে শ্রমিকদের বাধ্য করা হচ্ছে। লকডাউনের পর এই শ্রমিকরা তাদের চাকরি ফেরত পাবেন কি না, আবার যাদের চাকরি আছে তারা টিকে থাকতে পারবেন কিনা সেটা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। দ্রুত কোন ব্যবস্থা না নিলে এই মানুষগুলোর কর্মসংস্থান পুনরুদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা রামরুর চেয়ারম্যান তাসনিম সিদ্দিকি। তিনি বলেন, "তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় যে সংকট তৈরি হয়েছে, এসব দেশ অভিবাসী শ্রমিক কমিয়ে সেই খরচ কমানোর চেষ্টা করবে।" মিসেস সিদ্দিকির মতে, করোনাভাইরাসের এই প্রাদুর্ভাবের সময়ে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির কোন সম্ভাবনা নেই। যারা ফ্রি ভিসায় আছেন তাদেরও কোন কাজ নেই। আবার যাদের চাকরি আছে তারাও বেতনের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পাচ্ছে ন। ভবিষ্যতে এই টাকাও পাবেন কি না সেটারও কোন নিশ্চয়তা নেই। প্রবাসী শ্রমিকরা ছোট জায়গায় গাদাগাদি করে থাকেন। এই মানুষগুলো মসজিদে থাকছেন এবং মসজিদের চ্যারিটির খাবার খেয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন বলে তিনি জানান। শ্রমিকদের আয়ের ওপর নির্ভরশীল বাংলাদেশের পরিবারগুলো খাদ্য সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে মিসেস সিদ্দিকি বলেন, এই সংকটকালীন সময়ে প্রবাসী অভিবাসীদের অনেক পরিবার দারিদ্র সীমার নিচে চলে যেতে পারে। প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিটেন্সের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। কারণ বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি বড় অংশ শ্রমিকদের পাঠানো রেমিটেন্সের ওপর নির্ভরশীল। তাই ওই দেশগুলোর লকডাউনের প্রভাব সার্বিকভাবে জিডিপিতেও পড়েছে। চলতি বছর বাংলাদেশে এই রেমিটেন্সের হার ২২% কমে যাবে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্বব্যাংক। প্রবাসে কাজ করা নির্মাণ শ্রমিক। বাংলাদেশের ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী গত এপ্রিল মাসে প্রবাসীরা যে পরিমাণ রেমিটেন্স পাঠিয়েছে সেটা বিগত ১৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এমন অবস্থায় প্রবাসী শ্রমিক ও তাদের পরিবারগুলোর সহায়তায় একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করার কথা জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আহমেদ মনিরুছ সালেহীন। বর্তমানে বিশ্বের ২৬টি দেশে বাংলাদেশের যে ২৯টি মিশন আছে, সেখানকার লেবার উইং, এই অভিবাসী শ্রমিকদের খাবার সরবরাহসহ আরও নানা সহায়তা দিচ্ছে বলে তিনি জানান। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যারা দেশে ফেরত আসছেন তাদের বিমানবন্দরে ৫০০০ টাকা সহায়তা দেয়া হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে ২০০ কোটি টাকার একটি ঋণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছ�� জানিয়ে মি. সালেহীন বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় এই অভিবাসী শ্রমিকদের সহজ শর্তে ৪% সুদে এক লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয়া হবে। করোনাভাইরাস পরবর্তী পরিস্থিতিতে নির্মাণ শ্রমিক ছাঁটাই করা হলেও পরিচ্ছন্নতা খাতে বিপুল পরিমাণ শ্রমিকের চাহিদা তৈরি হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশি শ্রমিকদের দিয়ে সেই চাহিদা পূরণ করা গেলে রেমিটেন্সের প্রবাহ স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হবে বলে তারা জানিয়েছেন। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের যেসব শ্রমিক কাজ করেন তারা তাদের আয়ের একটি বড় অংশ দেশে পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেন। এখন ওই দেশগুলোয় লকডাউনের কারণে এরই মধ্যে অনেক শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন, বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। +text: রামুতে ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধ মন্দিরগুলো পুননির্মাণের পর সেগুলো উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফেসবুকে কোরান শরীফ অবমাননার অভিযোগে গত বছর এই হামলার সময় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষের ঘরবাড়ি এবং তাদের মন্দির আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সরকারি সহায়তায় ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধ বিহারগুলো পুননির্মাণ করা হলেও সেখানকার বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মধ্যে নিরাপত্তার বোধ কতোটা ফিরেছে? রামুর শ্রীকুল গ্রামের একজন বাসিন্দা দীপক বড়ুয়া। প্রায় এক বছর আগে রামুর বৌদ্ধ পল্লিতে যখন সাম্প্রদায়িক হামলা হয়, তখন ঘর ছেড়ে পালিয়ে একজন প্রতিবেশীর ঘরে আশ্রয় নিয়েছিলেন দীপক বড়ুয়া। তবে সেখানেও হামলার শিকার হয়ে পালিয়েছিলেন অন্যস্থানে। মিঃ বড়ুয়া বলেন, এখন থাকার মতো একটা জায়গা তৈরি হলেও, হামলার আগে এলাকায় সব সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে যে সুসম্পর্ক ছিল সে সম্পর্ক ফিরে আসাটা দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। ‘সম্প্রীতির ব্যাপারটা আসলে একদিনে আর অল্প সময়ের মধ্যে ফিরে আসে না। অনেকদিনের অনেক বছরের সম্প্রীতির যে সম্পর্ক ছিল তা একদিনেই নষ্ট হয়ে গেছে। সে সম্পর্কটা পুনরায় ফিরিয়ে আনতে সময় লাগবে।’ একই ধরনের মন্তব্য করেন রামুর স্থানীয় আরেক বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম। তিনি জানান হামলার বেশ কিছুদিন পর এলাকার মানুষের মধ্যে স্বাভাবিক একটা সম্পর্ক তৈরি হলেও হামলার শিকার এমন অনেকের মনেই চাপা ক্ষোভ কাজ করছে। তিনি বললেন আগে যেমন বড়ুয়া ও অন্য ধর্মের দুজনে বন্ধু ছিল। কিন্তু ঘটনার দিন তার বন্ধুকে বেরতে দেখে বড়ুয়ার মনে হয় ঘটনায় সে হয়ত জড়িত ছি��। ‘এমন সাধারণভাবে সবাই কথাবার্তা বলতেছে কিন্তু ভেতরে একটা ক্ষোভ কাজ করছে অনেকের মনে। পাশাপাশি থাকার পরও কথা বলতেছে ঠিকই কিন্তু মনের মধ্যে একটা ক্ষোভ কাজ করতেছে।’ ফেসবুকে কোরান শরীফ অবমাননার অভিযোগে ২০১২ সালের ২৯শে সেপ্টেম্বর রাতে রামুতে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটে। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে উখিয়া, ও টেকনাফ উপজেলায়। দু'দিনের সহিংস হামলায় রামু ও উখিয়ায় ১৯টি বৌদ্ধ বিহার ক্ষতিগ্রস্ত হয়, পুড়ে যায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের শত বছরের ইতিহাস। গত বছর সেপ্টেম্বরে দুদিনের সহিংস হামলায় রামু ও উখিয়াতে ১৯টি বৌদ্ধ বিহার ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাংলাদেশ বৌদ্ধ জাতীয় সুরক্ষা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী বিপ্লব বড়ুয়া বলছিলেন, ঐতিহ্যের যে নিদর্শন হারিয়ে গেছে তা কোনভাবেই ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়, তবে বিহারগুলো পুননির্মাণের ফলে তাদের মনের ক্ষত কিছুটা হলেও পূরণ হবে। ‘এখানে যে সমস্ত বৌদ্ধ মন্দির ছাই হয়ে গিয়েছিল আগুনে, সেগুলো শুধু বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সম্পদ ছিল না। আমরা মনে করি এগুলো জাতীয় সম্পদ, হাজার বছরের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। এখানে যা ক্ষতি হয়েছে, আমরা যা হারিয়েছি তা কোনভাবেই প্রতিস্থাপন করা সম্ভব না।’ সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার পর সরকারের উদ্যোগে রামু, উখিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা সংস্কার ও বিহারগুলো পুননির্মাণ করা হয়। রামুতে ১২টি এবং উখিয়ার ৭টিসহ মোট ১৯টি বৌদ্ধ বিহার নতুন করে নির্মাণ হলেও সেখানকার মানুষকে কি এ সংস্কার আশ্বস্ত করতে পেরেছে? রামু ও উখিয়ার স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ এখন স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরেছেন ঠিকই তবে অনেকের মনের মধ্যে একটা ভয় এখনো কাজ করছে । অনেকে মনে করছে ওইদিন যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল তারা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে আছে। তারা বলছেন বিহার নির্মাণকে কেন্দ্র করে সেনাবাহিনী অনেকদিন তাদের সাথে ছিল। কিন্তু বিহার নির্মাণ শেষে সেনাবাহিনীর চলে যাওয়ার সম্ভাবনায় একটা ভয় অনেকের মনেই কাজ করছে বলে জানালেন স্থানীয় বাসিন্দা দীপক বড়ুয়া। হামলার শিকার বৌদ্ধ সম্প্রদায়সহ স্থানীয় সকল বাসিন্দা আশা করছেন, ওই হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হলে তাদের পরস্পরের মধ্যে আস্থা ফিরে আসবে ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আরো জোরদার হবে। বাংলাদেশের রামু, উখিয়া এবং কক্সবাজারে গত বছর সাম্প্রদায়িক হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধমন্দিরগুলো পুননির্মাণের পর আজ মঙ্গলবার সেগুলো উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। +text: সুলতান মোহাম্মদ মনসুর মৌলভীবাজারের একটি আসনে গণফোরাম থেকে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেছেন, "সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত দলীয় সিদ্ধান্ত। এটা ভোটারদের সিদ্ধান্ত নয়। যারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন তাদের ১০০ ভাগই বলেছেন যে আপনি সংসদে যান।" গত ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মৌলভীবাজার ২ আসনে জয়লাভ করেন। ৩০০ আসনের মধ্যে বিরোধী জোট থেকে যে মাত্র আটজন নির্বাচিত হয়েছেন মি. মনসুর তাদের একজন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে আজ সোমবারেও দেওয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে তাদের সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত এখনও বহাল আছে। বড় রকমের কারচুপির অভিযোগ এনে ঐক্যফ্রন্ট ও তাদের বড় শরিক বিএনপি নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে। সংসদে না যাওয়ার দলীয় সিদ্ধান্তের পরও কেন তিনি সংসদে যাওয়ার কথা ভাবছেন জানতে চাইলে সাবেক এই আওয়ামী লীগ নেতাও ডাকসুর সাবেক সহসভাপতি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বিবিসি বাংলার শাকিল আনোয়ারকে বলেন, নির্বাচিত হওয়ার কারণে ভোটারদের কাছে তার দায়ভার আছে। "নির্বাচনে শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও যারা আমাকে নির্বাচিত করেছে তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তাদের অধিকার রক্ষা, এলাকার উন্নয়ন ও মানুষের পক্ষে কথা বলার জন্যেই তো তারা আমাকে ভোট দিয়েছে।" "এছাড়াও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহবায়ক কামাল হোসেনও ইতিবাচক ভূমিকা রাখার কথা বলেছেন, যার অর্থ হচ্ছে আমরা সংসদে যাবো," বলেন তিনি। তিনি বলেন, শপথ নেওয়ার ব্যাপারে আমিও ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবো। কবে করবো, কখন করবো সেটা সময় বলে দেবে। তার নিজের দল গণফোরামও যদি দলীয়ভাবে সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তখন তিনি কী করবেন এই প্রশ্নের জবাবে মি. আহমেদ বলেন, "আমি জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে গত নির্বাচনের প্রার্থী হয়েছিলাম। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য হিসেবে। এই ফ্রন্টের সিদ্ধান্ত হিসেবেই আমরা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছিলাম।" জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে ধানের শীষ প্রতীকে অংশ নিয়েছিলেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। আরো পড়তে পারেন: আফগানিস্তানে কিভাবে ঢুকেছিল সোভিয়েত বাহিনী যে ভুলের কারণে জন্ম নিলো ১২০ কোটি ডলারের ব্যবসা নেপালের রিপোর্টে দায়ী ইউএস বাংলার পাইলট মুরগির ডিম থেকে পাওয়া যাবে ক্যান্সার প্রতিরোধী ওষুধ কিন্তু ধানের শীষ প্রতীক তো বিরোধী দল বিএনপির প্রতীক? উত্তর: একসময় মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ন্যাপের প্রতীক ছিল ধানের শীষ। পরবর্তীকালে সেটা বিএনপির মার্কা হয়েছে। গত নির্বাচনে আমি এটাকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মার্কা হিসেবে নিয়েই নির্বাচন করেছি। আমি বিএনপি হিসেবে নির্বাচন করিনি। আমি বঙ্গবন্ধুর অনুসারী হিসেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে করেছি। প্রশ্ন: কিন্তু আপনার এলাকার ভোটাররা তো আপনাকে ধানের শীষ দেখেই ভোট দিয়েছে। উত্তর: ধানের শীষ দেখে যেমন ভোট দিয়েছে তেমনি আমার ব্যক্তিগত অবস্থান ও গ্রহণযোগ্যতা মেনে নিয়েই আমাকে ভোট দিয়েছে। সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেন, মৌলভীবাজারের যে আসন থেকে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন সেখান থেকে কোনদিন ধানের শীষ জয়লাভ করতে পারেনি। তার দাবি যারা ধানের শীষের পক্ষে নন তারাও তাকে ভোট দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের হয়ে তিনি ১৯৯৬ সালেও এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি দাবি করেন সেসময় তিনি তার এলাকার যে উন্নয়ন করেছিলেন সেটা গত ১০০ বছরেও হয়নি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, বিএনপি, গণফোরাম- সবাই মিলে সংসদে না যাওয়ার পক্ষে সিদ্ধান্ত নিলে কী করবেন জানতে চাইলে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেন, "সময়ই কথা বলবে। এব্যাপারে এই মুহূর্তে চূড়ান্ত বক্তব্য দিতে পারবো না।" চট্টগ্রামে ভোটের আগে ব্যালট বাক্স ভরা পেলেন বিবিসি'র সাংবাদিক বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও এই ফ্রন্টের একজন নেতা বলেছেন তিনি সংসদে যাবেন এবং এব্যাপারে তিনি মানসিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। +text: ড. কামাল হোসেন রেডিও-তে প্রচারিত সাক্ষাৎকারটির ওপর ভিত্তি করে বিবিসি বাংলার অনলাইনে যে সংবাদ প্রকাশ করা হয় তার শিরোনাম ছিল "বাংলাদেশে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে নীতিগত আপত্তি নেই ড. কামালের"। ওই সাক্ষাৎকারের সূত্র ধরে সোমবার সাংবাদিকরা ড. হোসেনকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন যে বিবিসি বাংলা তাঁর বক্তব্য ঠিকভাবে উদ্ধৃত করেনি। বিবিসি বাংলার সঙ্গে ওই সাক্ষাৎকারে তিনি যা বলেছিলেন, নিচে তা হুবহু তুলে ধরা হল। ড. কামাল হোসেনের কাছে বিবিসি বাংলার মোয়াজ্জেম হোসেন প্রথমেই জানতে চেয়েছিলেন, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া কি নির্বাচনী জোট, না-কি সরকার বিরোধী আন্দোলনের মঞ্চ? ড. কামাল হোসেন: পুরো সুষ্ঠু নির্বাচন করার জোট, যে কারণে এটা সম্ভব হয়েছে ইমিডিয়েটলি করে নেয়া। বিবিসি বাংলা: তাহলে আপনি বলছেন এটি ক্ষমতায় যাওয়ার লক্ষ্যে ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের কোন জোট নয়? ড. কামাল হোসেন: না না, মোটেই না। সরকার আসতে পারে তো এখানে। বিবিসি বাংলা: কিন্তু আমরা তো এরকম একটা সমালোচনা শুনছি যে আপনারা আসলে সরকারকে বিপদে ফেলার জন্য এবং বিরোধী দল বিএনপিকে মাঠে নামার সুযোগ করে দেয়ার জন্য এই জোটটা করেছেন। ড. কামাল হোসেন: ওনাদেরকে একটু আশ্বাস দিতে পারেন যে এরকম কোন সিদ্ধান্ত আমাদের মাথায় ছিলই না যখন আমরা এটা করি।। শুরু ছিল যে সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে যারাই নির্বাচনে, ইনক্লুডিং সরকারও, এই জোটে আসতে পারে। বিবিসি বাংলা: তো এই যে আপনারা বলছেন যে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে আপনারা এই জোটটা করেছেন তো সেই সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কী কী পূর্বশর্ত আপনারা সরকারকে দিচ্ছেন যে কোন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করলে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন আসলে করা সম্ভব হবে? ড. কামাল হোসেন: এই যেমন সুষ্ঠু নির্বাচন হল যে, ভোটার লিস্টগুলো নিরপেক্ষভাবে, সঠিকভাবে তৈরি করা হবে। সকলকে সেই সুষ্ঠু ভোটার লিস্টের ভিত্তিতে ভোট দেয়ার সুযোগ নিশ্চিত করা হবে। নির্বাচন সামনে রেখে বিরোধী জোট গঠনের উদ্যোক্তারা বিবিসি বাংলা: কিন্তু নির্বাচনটা যে সরকার পরিচালনা করবে সেই সরকার কেমন হবে, কোন কাঠামোতে সেই সরকার পরিচালিত হবে, সে ব্যাপারে আপনাদের বক্তব্যটা কি? ড. কামাল হোসেন: সেটা তো আইনেই আছে। বুচ্ছেন না। সেখানে ইলেকশনের সময় যারা পরিচালনা করবেন তারা নিরপেক্ষ থাকবেন, তারা কোন দলীয় প্রভাবে নিয়ন্ত্রণে থাকবেন না। ইলেকশন হবে। মানে যেটা শুড বি, নট অনলি ফেয়ার, বাট বি সিন টুবি ফেয়ার, বুচ্ছেন না, এটা মানে ... বিবিসি বাংলা: কিন্তু এখন বাংলাদেশের যে সংবিধান, সেই সংবিধানে কি আসলে এমন নিরপেক্ষ লোক দিয়ে সরকার গঠনের কোন সুযোগ আদৌ আছে? ড. কামাল হোসেন: না, সেটাতো মানে, সংবিধানে এটা তো মানুষের চরিত্রের ব্যাপার। আমরা বলছি যে বিভিন্ন দলের যারা নেতৃবৃন্দ আছেন তারা যখন একটা স্বাক্ষর করবেন যে, আমরা কেউ এখানে হস্তক্ষেপ করবো না, আমরা এই প্রক্রিয়াকে একটা নিরপেক্ষ প্রক্রিয়া হিসেবে হতে দেব। তখন আমরা ধরে নিতে পারি যে সরকারের পক্ষে যারা ওথ নিয়ে কথাগুলো বলবেন, আমাদের পক্ষে যারা ওথ নিয়ে বলবেন, তাদের তো একটা ন্যূনতম দায়িত্ববোধ থাকবে আর কি, যেটা বলবেন সেটা রক্ষা করবেন। বিবিসি বাংলা: কিন্তু এখন যে বাংলাদেশের সংবিধান, এই সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে কিভাবে আসলে এই সরকারটা গঠন করা হবে। আপনাদের কি কোন সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আছে? ড. কামাল হোসেন: না, সেগুলো তো আইন এবং সংবিধান দেখলে তো ওখানে বলা আছে, নির্বাচন হবে, নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হবে, সকলেই যারা এখানে, মানে প্রতিযোগিতা করতে চান, এসে করতে পারবেন। এবং সেটা নির্বাচন কমিশন এটার রেফারি হিসাবে পরিচালনা করবে। কোন রকমের যদি নিরপেক্ষতা থেকে কেউ সরে যায় তো সেটাকে তারা চিহ্নিত করবে এবং এটাকে অবৈধ বলবে। এবং যদি সে, এরকম অবৈধ কোন জিনিষ না হয়, যেটা নিয়ে ইলেকশন কমিশন কে বলতে না হয় যে এ নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষ হল না, তখন তারা এটার রায় দেবে না আর কি। তো এগুলো তো ইলেকশন আইনের মধ্যেই আছে। বিবিসি বাংলা: তার মানে আপনি কি, আপনারা কি এটা বলতে চাইছেন যে এখন বাংলাদেশের যে সংবিধান এবং এই সংবিধানের অধীনে এখন বাংলাদেশে যে সরকার ক্ষমতায়, এই সরকারের অধীনে আপনারা নির্বাচনে যেতে রাজী? আরও পড়তে পারেন: ড. কামালের রাজনৈতিক ঐক্য প্রক্রিয়া: বিএনপির কী লাভ? 'প্রধানমন্ত্রীর কথাই শেষ নয়, আলোচনা হতেই পারে' বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে 'সাইবার যুদ্ধের' সম্ভাবনা ড. কামাল হোসেন: ইন প্রিন্সিপাল, ইন প্রিন্সিপাল। এটা বলা হচ্ছে যে তারা যেগুলো, মানে আইনে আছে, এগুলো মেনেই করবেন। যদি এখান থেকে কোন দেখা যায় যে না তারা এখান থেকে সরে যাচ্ছে, অথবা কোন রকমের প্রভাব ফেলার চেষ্টা করছে, তখন যদি এটা দৃষ্টিতে আসে, তখন তো প্রচণ্ড আপত্তি করা হবে যে এটা থেকে আপনারা বিরত থাকেন। যদি এটা থেকে বিরত ... যদি করতে থাকেন, আমি বলবো না যে করবেন, যদি আইদার সাইড দেখে যে না, এটা কোন কেউ এটা রীতিনীতি না মেনে করা হচ্ছে, তখন তো নির্বাচনকে বাতিল করার জন্য কোর্টে যেতে হবে। কোর্টকে বলতে হবে যে, এসব কারণে এটা অবাধ নিরপেক্ষ হল না, যেটা আইনের বিধান আছে যে এটা হতে হবে, সো আপনারা কোর্ট এটাকে বিবেচনা করে ডিক্লেয়ার করেন যে এটা হল না। এটা ইলেকশন এখানে সংবিধান অনুযায়ী হয়নি, তো যার কারণে এখন নতুন করে ইলেকশন আবার করতে হয়। বিবিসি বাংলা: এই যে আপনি বলছেন ইন প্রিন্সিপাল বা নীতিগতভাবে বর্তমান সরকারের অধীনে, নির্বাচনে যেতে আপনারা রাজী, এটি কি শুধু আপনাদের কথা বলছেন, নাকি আপনাদের প্ল্যাটফর্মে যতো দল এসেছে বিএনপিসহ সবার কথা বলছেন - সবাই যেতে রাজী? ড. কামাল হোসেন: না, আসলে তো আমরা এভাবে বসে এই ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত হয় নাই। আমি আমাদের দলের কথা বলছি আর কি। আর, এটা তো একটা সিম্পল প্রভিশনের আমি মনে করি যে সবাই এটা, মানে, বলতে দ্বিধাবোধ করবেন না। তবে কোন সিদ্ধান্ত এরকম বসে আমরা নিই নাই। পুরো সাক্ষাৎকারটির অডিও শুনতে পারেন: বিবিসির সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার বাংলাদেশে নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি বিরোধী রাজনৈতিক জোট গঠনের মূল উদ্যোক্তাদের একজন ড. কামাল হোসেন বিবিসি বাংলাকে গত রবিবার একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। +text: ফেসবুক সহ নানা ধরণের সামাজিক মাধ্যমের ওপর নজরদারি করা যাবে এই প্রযুক্তি দিয়ে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বিবিসি বাংলাকে বলেন, "আমাদের নিরাপদ থাকার জন্য যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার, সেসব ব্যবস্থা আমরা নেব।" তবে এ বিষয়টিকে তিনি সামাজিক মাধ্যমের ওপর 'নজরদারি' বলতে অস্বীকৃতি জানান। ঠিক কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের কথা আপনারা ভাবছেন? বিবিসি বাংলার পুলক গুপ্তের এ প্রশ্নের উত্তরে মোস্তাফা জব্বার বলেন, "যেসব ক্ষতিকর বিষয় আছে, সেসব যেন আমরা সনাক্ত করতে পারি। আমি তো আর ফেসবুক বন্ধ করে দিতে পারবো না । তবে যেখানে যেখানে প্রয়োজন, নিজের ভূখন্ডকে নিরাপদ রাখতে প্রযুক্তি ব্যবহার করার যতটুকু সুযোগ আছে, ততটুকু প্রযুক্তি ব্যবহার করবো।" ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সাংবাদিকরা শংকায় এ ধরনের 'মনিটরিং প্রযুক্তি' ব্যবহারের কথা মোস্তাফা জব্বার প্রথম উল্লেখ করেন গত শনিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে। 'নির্বাচনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভূমিকা' বিষয়ে ঐ আলোচনার আয়োজন করেছিল একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। সরকার কি ফেসবুক, গুগল বা ইউটিউবের মতো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের লক্ষ্যেই এই প্রযুক্তি আনার কথা বলছে? বিবিসি বাংলার এ প্রশ্নের উত্তরে মোস্তাফা জব্বার বলেন, "নিয়ন্ত্রণ শব্দটি নিয়েই আমার আপত্তি আছে। ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব, এগুলো আমেরিকান প্রতিষ্ঠান। সেদেশের আইনে প্রতিষ্ঠিত। সেদেশের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড দ্বারা পরিচালিত। অন্যান্য দেশে তারা যেরকম সংকট তৈরি করে, আমাদের দেশে সংকটটা একটু বেশি তৈরি হয়। কারণ আমাদের জীবন-যাপনের মান আমেরিকানদের মতো নয়। আমাদের স্ট্যান্ডার্ড ভিন্ন। আমাদের ধর্মীয় মূল্যবোধ থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ সবই ভিন্ন মাত্রার। " যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার: "শংকার কোন কারণ নেই" তিনি আরও বলেন, "কাজেই আমাদের এখানে যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহৃত হয়, তখন অপব্যবহারের মাত্রাটাও থাকে। আমাদের এখানে এমন কিছু রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ আছে, যে চ্যালেঞ্জ হয়তো বিশ্বের অনেক দেশ মোকাবেলাই করে না। আমাদের এখানে জঙ্গীবাদ আছে, সন্ত্রাস আছে। গুজব প্রচার করা হয়। এই বিষয়গুলোও আছে।" মোস্তাফা জব্বার বলেন, "আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছি। বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের কথা বলছি। এই ডিজিটাল বাংলাদেশকে নিরাপদ করার জন্য যা যা করার দরকার, আমরা তাই করবো। কাজেই সেখানে আমার জন্য, আমার দেশের নাগরিকদের জন্য ক্ষতিকর যা থাকে, সেই ক্ষতিকর ময়লা-আবর্জনা ফেলে দেয়ার দায়িত্ব তো নিশ্চয়ই আমাকেই করতে হবে।" আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারে ভয় কেন? ফেসবুক বন্ধ: বাংলাদেশে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন অনেকেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: উদ্বেগ কোথায়? এই কাজের জন্য সরকার যে প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা বলছে, সেটি তাহলে কী ধরনের হবে? মোস্তাফা জব্বার বলেন, "এটি মনিটরিং করা থেকে শুরু করে যেখানে যেখানে ক্ষতিকর উপাদান থাকবে, সেটা থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা। ডিজিটাল প্রযুক্তি কেবল মাত্র কোন একটা শব্দ, বা ছবি বা কোন একটা সুনির্দিষ্ট বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এখনকার প্রযুক্তি এবং ভবিষ্যতের প্রযুক্তির সক্ষমতা অনেক বেশি। সুতরাং সেই সক্ষমতা অনুযায়ী আমার দেশকে নিরাপদ রাখা, দেশের মানুষকে নিরাপদ রাখা, ডিজিটাল অপরাধ থেকে নিরাপদ রাখা। এটাই আমাদের লক্ষ্য।" ডিজিটাল নজরদারিকে গনতন্ত্রের জন্য হুমকি বলে গণ্য করা হচ্ছে তিনি বলেন, এজন্যে হার্ডওয়্যার এবং সফ্টওয়্যার দুটিই লাগবে। এক্ষেত্রে যা দরকার হবে, সরকার তাই ব্যবহার করবে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকার এই উদ্যোগের কথা জানাচ্ছে এমন এক সময়, যখন সরকারের নতুন একটি আইন "ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন" নিয়ে সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। নির্বাচন সামনে রেখে সরকার এধরণের পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে আশংকা করছেন সরকারের সমালোচকরা। সরকারের এই পদক্ষেপ কি অনেকটা নজরদারি, নিয়ন্ত্রণ বা বিধিনিষেধ আরোপের মতো ব্যাপার তাহলে? এ প্রশ্নের উত্তরে মোস্তাফা জব্বার বলেন, "কোন রাষ্ট্র কি এমন একটা ব্যবস্থা নেবে না যে তার নাগরিকদের নিরাপদ রাখা দরকার? এখানে নজরদারির কি আছে! যখন একটি জনসভা হয়, তখন সেখানে যদি আমি সিসিটিভি টাওয়ার বসিয়ে সেই জনসভার দিকে লক্ষ্য রাখি, সেখানে কোন অপরাধমূলক কাজ হচ্ছে কীনা, এই নজরদারি তো থাকেই। আমার দেশের বিরুদ্ধে কেউ কাজ করছে কিনা, সেই নজরদারি তো আমি করবোই। আমার নাগরিকের বিরুদ্ধে কেউ কোন অপরাধ করছে কিনা, সেই নজরদারি তো আমাকে করতেই হবে।" মোস্তাফা জব্বার বলেন, সরকারের এই উদ্যোগ নিয়ে কোন আশংকার যৌক্তিক কারণ নেই। তিনি বলেন, "অপরাধ না করলে তো আতংকিত হওয়ার কোন কারণ দেখি না।" নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশে ফেসবুক, ইউটিউব বা গুগলের মতো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ওপর নজর রাখতে সরকার নানা ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে। +text: স্যুপের বাটিতে পাওয়া গেল মরা ইঁদুর স্যুপের বাটি থেকে মহিলা চপস্টিক দিয়ে মরা ইঁদুর তুলছেন। এই ছবিটি অনলাইনে দ্রুত ছড়িয়ে গেল। 'শিয়াবু শিয়াবু' নামের যে রেস্টুরেন্টে এই ঘটনা, সেটির শাখাটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। রেস্টুরেন্টের ঐ শাখাটি নাকি কাস্টমারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাঁচ হাজার ইউয়ান (৭২০ ডলার) দিতে চেয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় একটি সংবাদ সংস্থা ঐ মহিলার স্বামীর সঙ্গে কথা বলে জানাচ্ছে, তিনি এই ক্ষতিপূরণ প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ তিনি অন্তসত্ত্বা স্ত্রীর একটি পূর্ণাঙ্গ শারীরিক পরীক্ষা করাতে চেয়েছিলেন তার আগে। কারণ মরা ইঁদুর দেখার আগেই কিছু খাবার খেয়ে ফেলেছিলেন তিনি। মহিলার স্বামী মিস্টার মা অভিযোগ করছেন, রেস্টুরেন্টের একজন কর্মী এমন প্রস্তাবও দিয়েছিলেন যদি পেটের বাচ্চা নিয়ে তারা খুব বেশি উদ্বিগ্ন হন, তাহলে গর্ভপাত করে ফেলতে পারেন। সেই বাবদ রেস্টুরেন্ট তাদের বিশ হাজার ইউয়ান ক্ষতিপূরণ দেবে। খাবারে মরা ইঁদুরের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে এই ঘটনার খবর এবং ছবি চীনের সোশ্যাল মিডিয়া সাইট 'ওয়েইবো' তে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে লোকজন এর বিরুদ্ধে তাদের তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। 'আমার মনে হচ্ছে যে বমি হয়ে যাবে। আমি আর জীবনে কখনো হটপটে খেতে যাব না', লিখেছেন একজন। অন্যান্য খবর: গার্মেন্টস শিল্পে ৮ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা বাংলাদেশেও কেন মেয়েদের মধ্যে ক্যান্সার বাড়ছে? ‘খেলাপি ঋণ আদায় হয়না রাজনৈতিক কারণে’ রেস্টুরেন্ট চেনটির শেয়ার মূল্য মারাত্মকভাবে পড়ে গেছে গত ১১ই সেপ্টেম্বর কোম্পানির শেয়ার গত এক বছরের মধ্যে সবচেয়ে নীচে নেমে যায়। তবে বুধবার থেকে শেয়ারের দাম কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে। আরেক জনের মন্তব্য, "শিয়াবু শিয়াবু ছিল আমার প্রিয় রেস্টুরেন্টগুলোর একটি। আমার ধারণা ছিল তারা বেশ পরিচ্ছন্ন। আমি এটা বিশ্বাসই করতে পারছি না।" অপর একজন প্রশ্ন করেছেন, "যদি এই মহিলার পেটের সন্তানের কিছু হয়, ওরা কিভাবে তার ক্ষতিপূরণ দেবে? একটা জীবনের দাম কি মাত্র বিশ হাজার ইউয়ান?" চীনের একটি জনপ্রিয় রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছিলেন এক মহিলা। তখন তিনি অন্তসত্বা। মহিলা স্যুপের বাটিতে পেলেন এক মরা ইঁদুর। এরপর এই রেস্টুরেন্ট চেনের শেয়ারের দাম এতটাই পড়ে গেল যে কোম্পানির মূল্য কমে গেল প্রায় উনিশ কোটি ডলার। +text: সীমান্তে উত্তেজনার পর ভারতে চীন বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। এই উত্তেজনা কমানো এবং সংঘাত এড়ানোর জন্য দুই দেশ এখন আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দুদিক থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই উত্তেজনা এবং সংঘাত সম্পর্কে অনেক মিথ্যে এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এরকম কিছু মিথ্যে তথ্য এবং দাবি যাচাই করে দেখেছেন বিবিসির 'রিয়েলিটি চেকের' শ্রুতি মেনন এবং উপাসানা ভাট। দাবি: চীনের সেনাদের সীমান্তে পাঠানোর পর তারা কাঁদছে রায়: বিভ্রান্তিকর এই ভিডিওটিকে অপ্রাসঙ্গিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এই ভিডিওটি টুইটারে শেয়ার করেছেন কিছু মানুষ। এরপর গত সেপ্টেম্বরে তাইওয়ানের কিছু গণমাধ্যমের নজরে পড়ে ভিডিওটি। তারা এটি প্রচার করে। এরপর ভিডিওটি ভাইরাল হয় ভারতে। সেখানে লোকজন এই বলে চীনা সৈন্যদের উপহাস করতে থাকে যে সীমান্তে পাঠানো হয়েছে বলেই তারা কাঁদছে। ভিডিওটি এপর্যন্ত তিন লাখ বারের বেশি দেখা হয়েছে অনলাইনে। ভারতে 'জি নিউজ' থেকে শুরু করে বড় বড় গণমাধ্যমে এটি প্রচারিত হয়েছে। বিভ্রান্তিকর: ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে এই ছবি এই ভিডিওতে দেখা যায় চীনা সৈন্যরা একটি মিনিবাসে চড়ে যাচ্ছে। তারা ম্যান্ডারিন ভাষার একটি জনপ্রিয় সামরিক গান গাইছে। মূলত বাড়ির জন্য মন কাঁদছে এরকম একটি বিষয়ে এই গান। লাল এবং হলুদ রঙের যে উত্তরীয় সৈন্যরা পড়ে আছে, তাতে লেখা, 'সামরিক বাহিনীতে যোগ দাও মর্যাদার সঙ্গে।' কিন্তু বিবিসির রিয়েলিটি চেক এমন কোন প্রমাণ পায়নি, যা দেখে বলা যাবে এই সৈন্যদের ভারত সীমান্তে পাঠানো হচ্ছিল। চীনের গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, এই সৈনিকরা সেনাবাহিনিতে নতুন যোগ দিয়েছে। এরা আনহুই প্রদেশের ইয়াংযু জেলার ফাইয়াং শহরের লোক। পরিবারের সদস্যদের বিদায় দেয়ার পর তারা একটু আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিল। চীনা মেসেজিং অ্যাপ উইচ্যাটে একটি স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম গত ১৫ই সেপ্টেম্বর ভিডিওটি নিয়ে একটি বার্তা পোস্ট করে। সেখানে তারা বলছে, এই সৈনিকরা তাদের ব্যারাকে ফিরছিল। এদের মধ্যে পাঁচজন তিব্বত অঞ্চলে দায়িত্ব পালনে স্বেচ্ছায় আগ্রহ দেখিয়েছে। কিন্তু এই বার্তায় এমন কথা নেই যে এদেরকে সীমান্তে নিয়োজিত করা হয়েছে। কিংবা ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সীমান্ত উত্তেজনার কথাও এতে নেই। গত ২২শে সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমসের চীনা ভাষার সংস্করণে এই ভিডিওর খবরটি প্রকাশিত হয়। এতে তাইওয়ানের গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয় যে তারা এটি নিয়ে মিথ্যে তথ্য প্রচার করছে। পিতা-মাতাকে অশ্রুসজল চোখে বিদায় জানানোর ঘটনার এই ভিডিওকে তারা চীন-ভারত সীমান্তের পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কিত বলে দেখিয়েছে। দাবি: ভারতীয় সৈন্যরা চীনা লাউডস্পীকার থেকে আসা সঙ্গীতের তালে নাচছে রায়: এটি পুরোনা ভিডিও, সীমান্তে লাউডস্পীকার বসানোর কথা জানার বহু আগের। গত ১৬ই সেপ্টেম্বর ভারত এবং চীন উভয় দেশের গণমাধ্যমে এরকম একটি খবর প্রচারিত হয়। এতে বলা হয়, ভারতীয় সৈন্যদের মনোযোগ অন্যদিকে ফেরানোর জন্য চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি সীমান্ত বরাবার লাউডস্পীকার বসাচ্ছে এবং সেগুলো থেকে পাঞ্জাবী গান বাজাচ্ছে। গণমাধ্যামের রিপোর্টে আরও বলা হয়, চীনা সেনাবাহিনী এমন এক জায়গায় এসব লাউডস্পীকার বসিয়েছে যেটি ভারতীয় সেনাদের ২৪ ঘন্টার নজরদারিতে আছে। ভারত এবং চীন, উভয় দেশের গণমাধ্যমে এই খবরটি প্রচার করা হয় 'সেনাবাহিনীর সূত্র' উদ্ধৃত করে। পুরোনো ভিডিও: সীমান্তে লাউডস্পীকার আসার আগের ছবি এটি কিন্তু এই রিপোর্টের সঙ্গে কোন ছবি ছিল না, কোন ভিড���ও চিত্রও শেয়ার করা হয়নি। এরকম ঘটনা যে ঘটেছে, তার ভারতীয় সেনাবাহিনির তরফ থেকেও নিশ্চিত করা হয়নি। কিন্তু তারপরও ভারতে সোশ্যাল মিডিয়া প্রচুর মানুষ এই পুরোনো ভিডিও শেয়ার করেছে। যাতে দেখা যাচ্ছে ভারতীয় সৈন্যরা পাঞ্জাবী গানের তালে তালে নাচছে। বিবিসির রিয়েলিটি চেক দেখেছে, সীমান্তে লাউডস্পীকার বসানোর অনেক আগের ভিডিও এটি। আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে শেয়ার করা একটি ভিডিও রীতিমত ভাইরাল হয়েছিল। এটিতে দেখা যাচ্ছিল, পাঞ্জাবী সঙ্গীতের তালে তালে পাঁচ জন সৈনিক নাচছে। ৮৮,০০০ মানুষ ভিডিওটি দেখেছে। যারা এটি শেয়ার করেছেন, তারা দাবি করছিলেন, লাদাখে ভারত-চীন সীমান্তে ঘটেছে এই ঘটনা। কিন্তু 'রিভার্স-ইমেজ সার্চ' করে দেখা যাচ্ছে এই ভিডিওটি আসলে এবছরের জুলাই মাসের। যদিও ভিডিওটি আসলে ঠিক কোন জায়গায় রেকর্ড করা হয়েছে তা পরিস্কার নয়, ঐ সময়ের বিভিন্ন খবর দেখে বোঝা যায় এটি আসলে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের ঘটনা। চীন-ভারত সীমান্তে এটি ধারণ করা হয় বলে যে দাবি করা হচ্ছে তা ঠিক নয়। দাবি: চীনের একটি বিশাল স্পীকার আছে, যা থেকে খুব জোরে সঙ্গীত বাজিয়ে ভারতীয় সৈন্যদের আহত করা হয়েছে রায়: এই যন্ত্রটি দিয়ে যে সীমান্তে গান বাজানো হয় এরকম কোন প্রমাণ নেই। এটি আসলে লাউড স্পীকার সম্পর্কিত আগের দাবিরই একটি ভিন্ন রূপ। একজন চীনা টুইটার ব্যবহারকারী একটি বিরাট যন্ত্রের এই ভিডিওটি শেয়ার করেন। তিনি দাবি করেন যে, এটি ব্যবহার করা হচ্ছে খুব উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে ভারতীয় সেনাদের অসুস্থ এবং আহত করার জন্য। এটি লাউডস্পীকার নয়, একটি মোবাইল সাইরেন। দুই লাখ বারের বেশি এই ভিডিওটি অনলাইনে দেখেছেন মানুষ। একটি ভারতীয় নিউজ চ্যানেলে পর্যন্ত এই ভিডিওটি দেখানো হয়েছে একই দাবি করে। আসলে ভাইরাল হওয়া এই ভিডিও ক্লিপটি ২০১৬ সালের মার্চ মাসের। ইউটিউবে ভিডিওটি ছাড়া হয়েছিল। যন্ত্রটি বানিয়েছে একটি চীনা কোম্পানি, তারা নিরাপত্তা সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি তৈরি করে। ভিডিওটি তাদেরই করা। যে যন্ত্রটির ছবি শেয়ার করা হয়েছে, সেটি আসলে একটি 'মোবাইল ওয়ার্নিং সাইরেন'। এটি বেশ বড়, ওজন প্রায় ৪ দশমিক ৬ টন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোন জরুরি অবস্থার সময় বেসামরিক জনগণকে সতর্ক করতে এই সাইরেন ব্যবহার করা হয়। কোম্পানির ওয়েবসাইটে এই যন্ত্রের ব্যবহার সম্পর্কে এরকম বিবরণই দে��়া আছে। এটি গান বাজানোর কোন লাউডস্পীকার নয়। আর এই সাইরেন চীনা সেনবাহিনী সীমান্তের কাছে ব্যবহার করছে কীনা, সেটাও ঠিক পরিস্কার নয়। আর অন্যদিকে, ভারতের কোন সৈন্যের কানের পর্দা ফেটে গেছে, এরকম খবরও কিন্তু কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি। দাবি: ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বহনকারী একটি বাস দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার পর সীমান্তে উত্তেজনা শুরু হয়। রায়: বিভ্রান্তিকর, কারণ এই দুর্ঘটনা সীমান্তের কাছে ঘটেনি। এটি ভারত-চীন সীমান্তে নয়, ছত্তিশগড়ের ছবি চীন থেকে একজন টুইটারে ২১শে সেপ্টেম্বর একটি ভিডিও পোস্ট করে, যাতে দাবি করা হয়, সীমান্ত নিয়ে আলোচনার জন্য ভারতীয়রা মাঝামাঝি জায়গা পর্যন্ত আসতে পারছে না, কারণ 'ভারতীয় সৈন্যরা নিজেরাই মারা পড়ছে, তাদের বাঁচাতেই তারা ব্যতিব্যস্ত।' ভিডিওতে দেখা যায়, একটি সামরিক বাস নদীতে ডুবে যাচ্ছে, কাছে দাঁড়িয়ে আছে ভারতীয় সৈন্যরা। আর নীচের লেখায় দাবি করা হচ্ছে, "লাদাখে ভারতীয় সেনাবাহিনীর আত্মহত্যার ভয়ংকর চেষ্টা।" এই ভিডিওটি দেখা হয়েছে ৫,০০০ বার। এই ভিডিওটি আসল, ভুয়া নয়। কিন্তু এই দুর্ঘটনা ভারত-চীন সীমান্তের কাছে নয়। এটি ভারতের মধ্যমাঞ্চলীয় প্রদেশ ছত্তিশগড়ে ঘটেছে। গত সেপ্টেম্বরে বিজাপুর জেলায় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বহনকারী এই বাস বন্যায় একাকার হয়ে যাওয়া নদীর পানিতে পড়ে যায়। তখন ভারতীয় গণমাধ্যমে এই দুর্ঘটনার খবর বেরিয়েছে। উল্টে যাওয়া বাসটার ছবিও দেখানো হয়েছিল। তবে সেখানে কেউ মারা যায়নি। গত জুন মাসে ভারত এবং চীনের মধ্যে সীমান্তে এক সংঘর্ষে নিহত হয়েছিল অন্তত ২০জন ভারতীয় সেনা। তারপর থেকে দুই দেশের সীমান্তে চলছে তীব্র উত্তেজনা। +text: বাংলাদেশে র‍্যাব-পুলিশের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে গত ১৮ দিনে নিহত হয়েছে অন্তত ৩৮ জন এছাড়া টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, দিনাজপুর, যশোর, চুয়াডাঙ্গা রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলায় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে আজ গ্রেফতার করা হয়েছে তিন শতাধিক সন্দেহভাজনকে। গোপন খবরের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে দাবি করেছে র‍্যাব। নিহত সবাই মাদক-ব্যবসা এবং মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত এবং চিহ্নিত অপরাধী বলে জানায় নিরাপত্তা বাহিনী। তাদের প্রায় প্রত্যেকের বিরুদ্ধে থানায় এক বা একাধিক মামলা রয়েছ��� বলে তারা জানিয়েছে। নিহত সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে পুলিশ পাল্টা গুলি চালানোর অভিযোগ করলেও এক নিহতের স্ত্রীর দাবি, তার স্বামীর কাছে কখনো কোন আগ্নেয়াস্ত্র ছিল না। ''সে কোনদিন পিস্তলের চিহারাও দেখে নি - এগুলা মিথ্যা,'' বলেন চুয়াডাঙ্গায় বন্দুকযুদ্ধে নিহত কামরুজ্জামান সাজুর স্ত্রী নাসরিন খাতুন। ''এলাকাবাসী বলবে - সে নিশা করত এটা অস্বীকার করার মত কিসু নাই -কিন্তু সে অস্ত্র, গুলি কিসুই চিনে না।'' তিনি বলেন তার স্বামী আগে এসবের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কিন্তু চার মাসে আগে তাকে অ্যারেস্ট করার পর তিনি পুলিশকে মুচলেকা দিয়া বাড়িতে বসে আছেন। পুলিশের কাছে তিনি অঙ্গীকার করে এসেছেন তিনি নিজেওএর সঙ্গে জড়িত থাকবেন না- কেউ ব্যবসা করলে পুলিশকে জানাবেন। ''আমরা যখন যেটুক শুনসি তাই তাদেরকে বলসি- এখন এইভাবে ডাকি নিই যাই তারা আমার স্বামীরে মারি ফেলিসে।'' বাংলাদেশে এখন অন্য সব মাদক ছাড়িয়ে গেছে ইয়াবার ব্যবহার। পুলিশের দাবি মাদক চোরাচালানের খবর পেয়ে তারা যখন গ্রেফতার অভিযান চালাতে যায় তখন অভিযুক্তরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। এ অবস্থায় পুলিশ আত্মরক্ষার জন্য পাল্টা গুলি চালাতে বাধ্য হয়। এ কারণেই এই নিহতের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন চুয়াডাঙ্গার কোতোয়ালি থানার সহকারী পুলিশ সুপার আহসান হাবীব। ''যখন চোরাকারবারিরা পুলিশের অবস্থান টের পেয়ে গুলি চালিয়েছে স্বাভাবিকভাবে আমরাও আত্মরক্ষার্থে গুলি চালাই। সেই অধিকার আমাদের আছে। তবে নিরস্ত্রদের ওপর গুলি চালানোর যে অভিযোগ উঠেছে সেটা সম্পূর্ণ মনগড়া। যারা এমন অভিযোগ করছে তাদের কেউই ঘটনাস্থলে ছিল না,'' বলেন মি: হাবীব। তবে পুলিশের এমন দাবি অস্বীকার করেছেন চুয়াডাঙ্গায় বন্দুকযুদ্ধে নিহত কামরুজ্জামান সাজুর স্ত্রী নাসরিন খাতুন। রোববার তার লাশ উদ্ধার করা হয়। আরো পড়ুন: জেলখানায় নেশাদ্রব্যের ব্যবহার: কী করছে কর্তৃপক্ষ? সীমান্ত থেকে মাদক যেভাবে ঢাকায় যায় 'শুরু করার পরে বেরিয়ে আসতে পারছে না' নিহতের স্ত্রী নাসরিন খাতুন জানান তার স্বামী আগে মাদক সেবন করলেও সম্প্রতি পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর তিনি সব ছেড়ে দেন। ''আমার স্বামী দারোগারে বলসিল- ভাই আমাদের ভাল হওয়ার সুযোগ দিয়েন- আমরা একটা অটো কিনি চালাব। আমরা আর কুনো মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত থাকব না । আমি একটু হিরোইন খাওয়া ধরিছি বলি আমি �� ব্যবসার সাথে জড়ায়ে গেসিলাম । আমরা আর এসব করব না। আমাদের ভাল হওয়ার সুযোগ দেন।'' বিবিসি বাংলাকে নাসরিন খাতুন বলেন, ''আমার স্বামী তো ভাল হতে চাইল, তাহলে তাকে কেন ভাল হইতে দেয়া হইল না।'' পুলিশ কয়েকবার কামরুজ্জামানকে থানায় ডেকে পাঠিয়েছিলো বলে তিনি জানান। সবশেষ রোববার তিনি থানায় যাওয়ার কথা বলে আর ঘরে ফেরেননি। ''থানায় যাওয়ার পর থেকে তার ফোন আর খুলা পাই নাই। ফোন বন্ধ। বিভিন্ন জাগায় খোঁজ করিছি - তারে পাই নাই। পরে টিভিতে খবর দেখে জানতে পারি পুলিশ আমার স্বামীরে মারি ফেলিসে।'' মাদক নির্মূল অভিযানে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার এসব ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলে দাবি মানবাধিকার কর্মীদের৷ মাদক প্রতিরোধে সরকারের পদক্ষেপকে তারা স্বাগত জানালেও এতে যেন আইন ও মানবাধিকার লঙ্ঘন না হয় সে ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তারা। বাংলাদেশে বিগত কয়েক বছরে উদ্ধারকৃত ইয়াবার পরিমাণ। গত তেসরা মে রাজধানীতে র‌্যাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদকের বিরুদ্ধেও কঠোর অবস্থান নিতে বাহিনীটিকে নির্দেশ দেন। এর পর দিন থেকেই মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে র‌্যাব, পুলিশ ও ডিবি পুলিশ। প্রধানমন্ত্রীর সেই দিক নির্দেশনা অনুযায়ী মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ-র‌্যাবের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আজ সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমরা যুদ্ধ ঘোষণা করেছি। "মাদক ব্যবসায়ীরা অনেক প্রভাবশালী। তাদের কাছে সবধরনের অবৈধ অস্ত্র রয়েছে। তাই আমাদের নিরাপত্তাবাহিনী যখনই অভিযান চালাতে গেছে তাদের ওপর হামলা হয়েছে। সে কারণেই এই নিহতের ঘটনাগুলো ঘটেছে।" এর আগে, মাদকবিরোধী প্রচারাভিযানের অংশ হিসেবে সারাদেশে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করে নিরাপত্তা বাহিনী, যার স্লোগান -''চলো যাই যুদ্ধে মাদকের বিরুদ্ধে।'' আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় পুলিশ ও র‍্যাবের মাদক বিরোধী অভিযানে পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে ১১ জন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৮ দিনে মাদক ব্যবসায়ী সন্দেহে ৩৮জনের নিহত হবার খবর পাওয়া গেছে। +text: ১১২ বছর বয়স্ক বব ওয়েটন। এতদিন বেঁচে থাকার রহস্য কী? - 'মৃত্যুর কথা কখনো ভাবিনা।' জাপানের চিতেতসু ওয়াতানাব��র মৃত্যুর পর গত মাসে মি. ওয়েটনের ভাগ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষের খেতাবটি জোটে। ফলে, এবার স্বজনদের নিয়ে বড় আকারে জন্মদিন পালনের আয়োজন করেছিলেন তিনি। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সব আয়োজন ভেস্তে গেছে। জন্মদিনে তিনি আজ (রোববার) কেয়ারহোমে তার ছোট ঘরে স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টিনে। প্রেস এ্যাসোসিয়েশন সংবাদ সংস্থাকে তিনি বলেন, "সবকিছু বাতিল, কেউ আসবেনা, কোনো উৎসব হবেনা।" দুই বিশ্বযুদ্ধে বেঁচে যাওয়া বব ওয়েটন করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন কারণ, তার মতে, পুরোপুরি বোঝা যাচ্ছেনা এই ভাইরাস কতটা ভয়ঙ্কর এবং বাঁচতে গেলে ঠিক কি করতে হবে। "পুরো পৃথিবীর অবস্থা কেমন যেন ঘোলাটে হয়ে গেছে। কি জানি শেষ পর্যন্ত কী হয়।" "দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমরা জানতাম কী করতে হবে, আমাদের লক্ষ্য কী... কিন্তু কেউ এখন পর্যন্ত জানেনা কীভাবে এই ভাইরাসকে কব্জা করা যাবে, এর শেষ কোথায়। " স্প্যানিশ ফ্লু নামে যে ভাইরাস মহামারিতে ১৯১৮ সালে বিশ্বজুড়ে পাঁচ কোটিরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল, তখন মি. ওয়েটনের বয়স ছিল ১০। তবে তার পরিবার একশ বছর আগে ঐ ভয়াবহ মহামারির শিকার হয়নি। "পরে বড় হয়ে ঐ মহামারির কথা আমি ইতিহাস বইতে পড়েছি। ঐ বয়সে আমি তখন তেমন কিছুই বুঝিনি, কারণ আমার কোনো ভাই বা বোন বা ঘনিষ্ঠ কেউ ঐ রোগে মারা যায়নি।" তিনি বলেন, একশ বছর আগে ঐ সময়ে শিশুরা বাইরের জগত সম্পর্কে খুব কমই জানতো। "সেসময় একজন শিশুর জগত প্রাপ্তবয়স্কদের জগতের থেকে একদম আলাদা ছিল। শিশুরা সংবাদপত্র পড়তো না। রেডিও ছিলনা যে আপনি রেডিওতে খবর শুনতে পাবেন। এখনতো নানা দিক থেকে আসা খবরে ছোট-বড় সবাই সর্বক্ষণ নিমজ্জিত থাকেন।" করোনাভাইরাস: যতসব ভুল ধারণা- কি বলছে ডব্লিউএইচও করোনাভাইরাস এলো কোত্থেকে, ছড়ালো কিভাবে- যতসব ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ১৯১৮-২০ স্প্যানিশ ফ্লু প্যানডেমিকের সময় মানুষকে সাবধান করতে সাঁটা পোস্টার। বব ওয়েটন তখন ১০ বছরের শিশু। এতদিন বেঁচে থাকার রহস্য? মি ওয়েটন বলেন, কোনো গোপন ফরমুলা নেই তার কাছে। তবে তিনি বলেন, "আমি কখনই বৃদ্ধ হতে চাইতাম না, মৃত্যুর কথা ভাবতাম না" তবে তিনি মনে করেন, বইপড়া থেকে শুরু করে উইন্ড-মিলের মডেল তৈরির মত নানা বিষয় নিয়ে তার নিরন্তর আগ্রহ তাকে এতদিন পর্যন্ত সচল রাখতে সাহায্য করেছে। ১১২ বছরে শুধু ব্রিটেনেরই নয়, সারা বিশ্বের মোড় ঘোরানো সব ঘটনা- দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়ে আছেন বব ওয়েটন। জীবদ্দশায় এখন পর্যন্ত তিনি ব্রিটিশ রাজ-সিংহাসনে পাঁচজনকে বসতে দেখেছেন। ২২জন প্রধানমন্ত্রী দেখেছেন, দেখেছেন ২১ জন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। দুটো বিশ্বযুদ্ধই তার চোখের সামনে হয়েছে। এবং স্প্যানিশ ফ্লু, কলেরা এবং গুটি বসন্তের মত ভয়াবহ মহামারি থেকে রক্ষা পেয়েছেন। বব ওয়েটন তিন সন্তানের বাবা, তার নাতি-নাতনির সংখ্যা ১০ এবং প্র-পৌত্র প্রো-পৌত্রী ২৫ জন। দুর্ভাগ্য যে করোনাভাইরাসের কারণে ১১২ তম জন্মদিনে এই প্রিয়জনদের সান্নিধ্য বৃদ্ধ এই মানুষটির কপালে জুটলোনা। ব্রিটেনের হ্যাম্পশায়ার কাউন্টির অলটন শহরের ১১২ বছর বয়স্ক সাবেক শিক্ষক বব ওয়েটনকে বর্তমানে বিশ্বের বয়স্কতম মানুষ মনে করা হয়। +text: ২৭ ও ২৮শে ফেব্রুয়ারি শীর্ষ বৈঠক হবে ভিয়েতনামে। ১৯৬৫ সালের মার্চে ভিয়েতনাম যুদ্ধে অংশ নিতে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের দানাং শহরে নেমেছিলো মার্কিন সৈন্যদল। আর এর ৫৪ বছরের মাথায় সেই একই শহরে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে ভিয়েতনামের সাবেক শত্রু আমেরিকা আর আমেরিকার সাথে যুদ্ধের সময়কার মিত্র উত্তর কোরিয়া। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিশ্চিত করেছেন যে উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং আন এর সাথে তার বৈঠক হবে ভিয়েতনামে আগামী ২৮ ও ২৮শে ফেব্রুয়ারি। এই ভেন্যু হতে পারে দানাং বা হ্যানয়। আরো পড়ুন: ট্রাম্প-কিম বৈঠক: দিনের কিছু আলোচিত মুহূর্ত কিম-ট্রাম্প বৈঠক: প্রাপ্তি কী, জিতলেন কে? কিম জং আনের এই সুদর্শন দেহরক্ষীরা কারা দু পক্ষই বলছে ভিয়েতনাম তাদের কাছে নিরপেক্ষ ভেন্যু। কিন্তু ভিয়েতনাম কেন? কমিউনিস্টরা শাসন করলেও ভিয়েতনাম কার্যত পুঁজিবাদী অর্থনীতি। আর দেশটি এখন একই সাথে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মিত্র। দুপক্ষের চাহিদা পূরণে নিরপেক্ষ হোস্ট হিসেবেই দেশটিকে বিবেচনা করা হচ্ছে বলে বলছেন নিউ সাউথ ওয়েলস ইউনিভার্সিটির ভিয়েতনাম বিশেষজ্ঞ কার্ল থ্যায়ার। "প্রথম বিষয় হলো শীর্ষ বৈঠকের সময় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার সক্ষমতা আছে দেশটির। আর দু পক্ষই মনে করছে দেশটি নিরপেক্ষ"। কিম কেনো রাজী হলেন? উত্তর কোরীয় নেতার জন্য চীনের ওপর দিয়ে ভিয়েতনাম উড়ে যাওয়া নিরাপদ বেশি। আর খুব অল্প কয়েকটি দেশের মধ্যে ভিয়েতনাম একটি যার সাথে একই সাথে ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ং এর সুসম্পর্ক আছে। আর এর মাধ্যমে উত্তর কোরীয় নেতা প্রমাণ করতে চাইছেন যে তার দেশ বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। কিম জং আন ভিয়েতনাম ডেভেলপমেন্ট মডেল দিয়ে পড়ালেখা করেছেন এবং এবার নিজে থেকেই দেশটির রূপান্তর দেখার সুযোগ পাবেন। "ভিয়েতনামের সাথে যুদ্ধ আবার যুদ্ধের পর কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করে নিয়ে আসা। মুক্ত বাণিজ্য আলোচনা। এসব বিষয়ই এখন উত্তর কোরীয় নেতার জন্য আগ্রহের বিষয়," বলছিলেন অধ্যাপক থ্যায়ার। এশিয়ার দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি ভিয়েতনাম। ট্রাম্প কেনো রাজী হলেন? যদি ভিয়েতনামের অর্থনৈতিক সাফল্য কিম জং আনকে উৎসাহিত করে তাহলে সেই একই বিষয় হয়তো উদ্বুদ্ধ করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্টকেও। 'দৈ মৈ' নামে পরিচিত ১৯৮৬ সালে নেয়া সেই অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচি ভিয়েতনামকে তৈরি করেছে এশিয়ার সবেচয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিতে। অ্যাপেক সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে ট্রাম্প ২০১৭ সালে ভিয়েতনাম সফর করেছেন এবং ভিয়েতনামকে একটি কমফোর্ট জোনই মনে হয়েছে তখন, বলছিলেন অধ্যাপক থ্যায়ার। এছাড়া ব্যাপক বিধ্বংসী মারণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে অবরোধে সমর্থন দিয়ে যে সহযোগিতা ভিয়েতনাম করেছে তাও স্বীকার করে মার্কিন কর্মকর্তারা। নতুন ইতিহাস হবে ভিয়েতনামে? ভিয়েতনামে যুক্তরাষ্ট্র - উত্তর কোরিয়া শীর্ষ বৈঠকের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। দক্ষিণ কোরীয় নেতার মুখপাত্র বলেছেন, "ভিয়েতনাম এক সময় লড়াই করলেও এখন দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু। আমরা মনে করি যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার নতুন ইতিহাস রচনার জন্য ভিয়েতনাম হবে চমৎকার একটি জায়গা"। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: 'বিদ্যুৎ ঘাটতির দেশ থেকে বিদ্যুৎ উদ্বৃত্তের দেশ' দিল্লিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী - গুরুত্ব পাচ্ছে যে বিষয়গুলো শ্মশানে লাশ তুলে তান্ত্রিক সাধনা, পাঁচ কিশোর গ্রেপ্তার ভিয়েতনামে বেশ তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিলো আমেরিকার। যদিও সে যুদ্ধ শেষ হয়েছে ৪৪ বছর আগে। তারপর ভিয়েতনামকে কেনো নিরপেক্ষ ভেন্যু হিসেবে নিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। +text: ২০০৯ সালে ৫০ বছর বয়সে মারা যান মাইকেল জ্যাকসন ২০০৯ সালের ২৫শে জুন ৫০ বছর বয়সে মারা যান তিনি। তাঁর সঙ্গীতপ্রতিভার স্বীকৃতি হিসেবে জীবনে একাধিক মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এছাড়াও ভক্তদের কাছে তিনি জনপ্রিয় ছিলেন প্রযোজনা, গান রচনা, অভিনয় ও বিশেষ করে তাঁর নাচের জন্য। বিভিন্ন বিভাগে মোট ১৩বার পশ্চিমা সঙ্গীতের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার হিসেবে বিবেচিত 'গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড' জিতেছেন মাইকেল জ্যাকসন। উপস্থাপনায় সৃজনশীলতা, গানের সাথে মানানসই মনমুগ্ধকর নৃত্য, ব্যক্তিগত আদর্শ, জীবনযাপনের ধারাসহ আলোচিত-সমালোচিত নানা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণে তাঁর সময়কার সঙ্গীত জগতে তুমুল আলোড়ন তৈরী করেছিলেন মাইকেল জ্যাকসন। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন বাংলাদেশে কঠোর সরকার হঠাৎ নমনীয় কেন? সরকারি চাকরি শুরুর বয়স সীমা কি ৩৫ করা উচিৎ রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও ধর্ষণের অভিযোগ: যা বলছে প্রশাসন কেইন ওয়েস্ট, উইকন্ড'র মত এখনকার অনেক জনপ্রিয় কৃষ্ণাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী মাইকেল জ্যাকসনকে আদর্শ হিসেবে মনে করেন বর্ণবৈষম্যের বিভেদ দূর করতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি ১৯৮২ সালে প্রকাশিত হওয়া মাইকেল জ্যাকসনের ষষ্ঠ একক অ্যালবাম 'থ্রিলার' বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। সেসময় থেকেই তাঁকে 'কিং অব পপ' বলা শুরু হয়। দীর্ঘসময় যাবত ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যবসাসফল গানের অ্যালবামের স্থানটি দখল করেছিল 'থ্রিলার।' কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ের অনেকেই মনে করেন, সেসময়কার সঙ্গীতজগতে বিদ্যমান বর্ণবৈষম্য দূর করার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা মাইকেল জ্যাকসনের। তাঁকে বলা হতো সর্বপ্রথম কৃষ্ণাঙ্গ তারকা, যিনি জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের মনে জায়গা করে নিতে পেরেছিলেন। মানুষের মধ্যে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা সেসময়কার উদীয়মান আফ্রিকান-আমেরিকান সঙ্গীতশিল্পীদের মধ্যে দারুণ অনুপ্রেরণা তৈরী করেছিল। আশার, কেইন ওয়েস্ট, উইকন্ড'এর মত এখনকার অনেক জনপ্রিয় কৃষ্ণাঙ্গ শিল্পীই বলেছেন তাঁরা মাইকেল জ্যাকসন দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত। বিভিন্ন উৎসবের সময় 'থ্রিলার' এর মিউজিক ভিডিওর পোশাক ও নাচ এখনও অনুকরণ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ তাঁর অভিনব মিউজিক ভিডিও ১৯৮৩ সালে 'থ্রিলার' গানের মিউজিক ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার আগে ১৪ মিনিট ধরে একটি গানের ভিডিও দেখার কথা হয়তো কেউ চিন্তাও করেননি। ঐ ভিডিওর মাধ্যমে মিউজিক ভিডিও সম্পর্কে সেসময়কার মানুষের প্রথাগত ধারণাই বদলে দিয়েছিলেন জ্যাকসন। 'থ্রিলার' এর ভিডিওতে মাইকেল জ্যাকসনকে 'ওয়্যারউলফ' (পশ্চিমা উপকথার কাল্পনিক দানব) বেশে মৃতদেহদের সাথে নাচতে দেখা যায়। ভিডিওটির ভিন্নধর্মী গ্রাফিক্স ও স্পেশাল ইফেক্ট মিউজিক ভিডিওর বাজারে বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসে। ঐ গানের ভিডিওতে মাইকেল জ্যাকসনের নাচের মূদ্রাগুলো তখন যতটা আলোড়ন তুলেছিল, সেগুলো এখনও ততটাই রোমাঞ্চ তৈরী করে ভক্তদের মনে। গান এবং নাচের জন্য সমানভাবে জনপ্রিয় মাইকেল জ্যাকসন আমেরিকার সঙ্গীত বিষয়ক পত্রিকা 'রোলিং স্টোনস'এর মতে, ১৯৬৪ সালে কিংবদন্তী বৃটিশ ব্যান্ড বিটলসে'র একটি কনসার্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত টেলিভিশনে সঙ্গীত প্রচারের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় 'থ্রিলার।' জানা যায় 'থ্রিলার'এর মিউজিক ভিডিও বানাতে ৫ লাখ ডলারের বেশী অর্থ খরচ হয়, যা ঐ সময়ের বিবেচনায় অত্যন্ত ব্যয়বহুল ছিল। 'থ্রিলার'এর বিস্ময়কর সাফল্যের পর মাইকেল জ্যাকসনকে 'সঙ্গীতের বাজারের একক উদ্ধারকর্তা' খেতাব দেয় 'টাইম' ম্যাগাজিন। পরবর্তীতে 'স্মুথ ক্রিমিনাল', 'ব্ল্যাক অর হোয়াইট', 'বিট ইট'এর মত দূর্দান্ত ব্যবসাসফল ভিডিও প্রকাশ করেন জ্যাকসন। তাঁর নাচ...এবং অবশ্যই, 'মুনওয়াক' মাইকেল জ্যাকসনের নাচের সবচেয়ে অভিনব অংশটি ছিল একটি বিশেষ মূদ্রা, যাকে 'মুনওয়াক' বলা হতো। এই 'মুনওয়াক' এর সময় জ্যাকসন বিশেষ ভঙ্গিমায় স্টেজের ওপরে এমনভাবে হেঁটে বেড়াতেন, যে দেখে মনে হতো তাঁর গোড়ালি স্টেজ স্পর্শ করছে না। 'স্মুথ ক্রিমিনাল' গানে জ্যাকসনের নাচের মূদ্রা ব্যবহারের অভিনবত্ব নিয়ে সম্প্রতি গবেষণা চালিয়েছে বিজ্ঞানীরা নাচের মূদ্রাগুলোকে এতটাই সাবলীলভাবে উপস্থাপন করতেন জ্যাকসন, যে কখনো কখনো মনে হতো নাচের মধ্যেও স্পেশাল ইফেক্ট ব্যবহার করেছেন তিনি। অধিকাংশ গানের ভিডিও তৈরীর জন্য জ্যাকসনকে কতটা কঠোর প্রস্তুতি নিতে হতো, তা 'স্মুথ ক্রিমিনাল' সহ আরো অনেক ভিডিওতে তাঁর পারফরমেন্স দেখে বোঝা যায়। 'লাইভ' কনসার্টের যাদু টিভি পর্দায় মাইকেল জ্যাকসনের নাচ-গানই ভক্তকূলের হৃদয় জয় করে নিয়েছিল। কিন্তু 'লাইভ' কনসার্টে তাঁর পারফরমেন্সে বিমোহিত হতে বাধ্য হয়েছে জ্যাকসন বিদ্বেষীরাও। অফুরন্ত জীবনীশক্তি আর প্রাণবন্ততা দিয়ে স্টেজ মাতানোয় খ্যাত ছিলেন তিনি। মাইকেল জ্যাকসনের পারফরমেন্সের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল 'লাইভ' কনসার্টগুলো দীর্ঘসময় ধরে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে অনুষ্ঠান করা বা 'মেগা ট্যুর' এর ধারণাকে জনপ্রিয়তা দেন জ্যাকসন। তাঁর ১৯৯২ সালের 'দ্য ডেঞ্জারাস ওয়ার্ল্ড ট্যুর' ���লে টানা পাঁচ মাস। সেসময়ের মধ্যে ৬৯টি কনসার্টে অংশ নেন তিনি। ২০০৯ সালে 'দিস ইজ ইট' নামের আরেকটি 'মেগা ট্যুর' আয়োজনের পরিকল্পনা করছিলেন মাইকেল জ্যাকসন, যেখানে মোট অনুষ্ঠান হতো ৫০টি। তাঁর শেষ লাইভ পারফরমেন্স হিসেবে ঘোষণা করা হতো ঐ অনুষ্ঠানগুলোকে। মাইকেল জ্যাকসনের রাজসিক প্রত্যাবর্তনের পরিকল্পনা কখনো বাস্তবায়িত হয়নি খ্যাতির বিড়ম্বনা মাইকেল জ্যাকসন তাঁর কর্মজীবনে অচিন্তনীয় সাফল্য পেলেও তাঁর ব্যক্তিগত জীবন সমালোচিত ছিল নানা বিতর্কে। সাফল্যের শীর্ষে থাকা অবস্থায় তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের পছন্দ-অপছন্দের বিষয়কে কেন্দ্র করে একের পর এক অভিযোগ তোলা হয়। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০০০'এর পর কয়েকবছরের জন্য নিজেকে অনেকটাই গুটিয়ে নেন জ্যাকসন। অবিশ্বাস্য সহজাত প্রতিভা ও উদ্ভট ব্যবহারের এক মিশ্রণ হিসেবে ভক্ত-সমালোচকদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন মাইকেল জ্যাকসন। আর এই বিরল মিশ্রণের কারণেই মাইকেল জ্যাকসনকে ঘিরে তৈরী হয়েছে গণমাধ্যম. সাধারণ মানুষ ও সমালোচকদের ব্যাপক আগ্রহ, যা তাঁকে সমসাময়িক অন্যান্য তারকাদের তুলনায় আলাদা একটি ভাবমূর্তি দিয়েছে। জীবনের শেষদিকে তাঁর চামড়া ফিকে হয়ে যেতে শুরু করে। সঙ্কুচিত হয়ে যেতে থাকে তাঁর নাকও। এমনটা শোনা যায় যে তিনি জোসেফ মেরিকের হাড়ও কেনার চেষ্টা করেছিলেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি ইংল্যান্ডে জন্ম নেয়া জোসেফ মেরিক তাঁর জীবদ্দশায় বিভিন্ন ধরণের শারীরিক বৈকল্য ও অঙ্গবিকৃতিতে ভোগেন। ২০০২ সালে জার্মানির একটি হোটেলের বারান্দার বিপজ্জনক দূরত্বে নিজের সন্তানকে নিয়ে আসার ঘটনায় কঠোর সমালোচনার মুখে পরেন নানা ধরণের শারীরিক ত্রুটি নিয়ে জন্ম নেয়া জোসেফ মেরিক ঐসময়কার চিকিৎসাশাস্ত্রের ইতিহাসে জায়গা করে নেন। জোসেফ মেরিকের রহস্যময় জীবনের ব্যাপারে সবসময়ই আগ্রহী ছিলেন মাইকেল জ্যাকসন। এ ঘটনার কিছুদিন পরেই একাধিক শিশু নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে জ্যাকসনের বিরুদ্ধে। তবে বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও, মাইকেল জ্যাকসনের বিরুদ্ধে আইনগত কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি কখনোই। মাইকেল জ্যাকসনের জীবনের শেষ কয়েকটা বছর কাটে জাঁকজমকপূর্ণ কনসার্টের মাধ্যমে সঙ্গীত জগতে রাজসিক প্রত্যাবর্তনের পরিকল্পনা করে। যেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে দেয়নি তাঁর অসময় মৃত্যু। বিশ্ববাস���র কাছে 'কিং অব পপ' বা পপ'এর রাজা হিসেবে পরিচিত মাইকেল জ্যাকসন ছিলেন বিংশ শতাব্দীর সঙ্গীতের জগতের কিংবদন্তীদের মধ্যে অন্যতম। +text: বিজ্ঞানীরা বলছেন, অক্সিজেন হ্রাস পাওয়ার কারণে হুমকিতে পড়বে টুনা, মার্লিন, হাঙ্গরের মতো অনেক মাছ। পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা আইইউসিএন-এর বড় ধরনের একটি গবেষণায় এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে। বহু দশক ধরেই বিজ্ঞানীরা জানতেন যে, মহাসাগরগুলোতে পুষ্টিমান কমে যাচ্ছে। এখন গবেষকরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অক্সিজেন হ্রাস পরিস্থিতিকে মারাত্মক করে তুলছে, ফলে হুমকিতে পড়ছে টুনা, মার্লিন, হাঙ্গরের মতো অনেক মাছ। কারণ বড় মাছগুলোর বেশি শক্তির দরকার হয়। সারা বিশ্ব জুড়ে সাতশোর বেশি সামুদ্রিক এলাকা এখন অক্সিজেন স্বল্পতায় ভুগছে। ১৯৬০ এর দশকে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৪৫টি। আরো পড়ুন: সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে কাজ করার প্রতিশ্রুতি কার্বন-ডাই-অক্সাইড থেকে কি প্লাস্টিক তৈরি হতে পারে লোনা পানি কীভাবে গর্ভপাত ঘটাচ্ছে নারীদের উত্তর মেরুতে বরফ গলে জাহাজ চলাচলের পথ খুলছে? হুমকিতে থাকা প্রাণীর মধ্যে রয়েছে টুনার মতো জনপ্রিয় মাছ বিজ্ঞানীরা বলছেন, কৃষি খামার ও শিল্প কারখানা থেকে নাইট্রোজেন এবং ফসফরাস সমুদ্রের পানিতে গিয়ে মেশার কারণেই পুষ্টি-দূষণের ঘটনা ঘটছে। সেই সঙ্গে এসব কারণে সমুদ্রের পানিতে থাকা অক্সিজেনের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলছে বলে বিজ্ঞানীরা জানতেন। এতদিন ধারণা করা হতো, এটি শুধুমাত্র উপকূলীয় এলাকার সমুদ্রেই প্রভাব ফেলছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই হুমকির মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রিনহাউজের কারণে যেহেতু কার্বন-ডাই অক্সাইড বৃদ্ধি পাচ্ছে, তার ফলে সমুদ্রগুলোকে আরো বেশি তাপ শুষে নিতে হচ্ছে। ফলে উষ্ণ পানি কম অক্সিজেন ধরে রাখতে পারছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, ১৯৬০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে সমুদ্রের পানি থেকে ২ শতাংশ অক্সিজেন হারিয়ে গেছে। সারা বিশ্বের বিবেচনায় এটা খুব বেশি মনে নাও হতে পারে। কিন্তু কোন কোন গ্রীষ্মপ্রধান এলাকায় এই হার ৪০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। এমনকি খুব সামান্য পরিবর্তনও সামুদ্রিক জীবনযাত্রার ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন কম অক্সিজেন সমৃদ্ধ পানি জেলিফিশের মতো প্রাণীর জন্য উপকারী হতে পারে, কিন্তু টুনা মাছের মতো বড়, দ্রুত সাতার কাটতে পারে, এমন প্রা��ীর জন্য সেটি ভালো নয়। ''অক্সিজেন হারিয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি আমরা জানতাম, কিন্তু সেটার সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের সম্পর্ক এবং কতটা হুমকি তৈরি করছে সেটা আমাদের জানা ছিল না,'' বলছেন আইইউসিএনের কর্মকর্তা মিন্না ইপস। ''গত ৫০ বছরে অক্সিজেন কমে যাওয়ার হার যে শুধুমাত্র চারগুণ হয়ে গেছে তাই নয়, এমনকি যেসব জায়গায় কার্বন নিঃসরণ কম হয়েছে সেখানেও মহাসাগর থেকে অক্সিজেন কমে যাচ্ছে।'' বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: বাংলাদেশে পীর-সুফিদের রাজনীতির ভবিষ্যৎ কবর থেকে উদ্ধার করা শিশুটি এখন পুরোপুরি সুস্থ বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের প্রতীক যে পাঁচ বিক্ষোভকারী ভরপেট খাওয়া বাংলাদেশিরাও কেন অপুষ্টির শিকার গবেষকরা বলছেন, এর ফলে টুনা, মার্লিন, হাঙ্গরের মতো অনেক প্রাণী সমুদ্রের উপরের দিকে এসে থাকতে শুরু করেছে। কিন্তু এ কারণে এসব প্রাণী মাছ-শিকারিদের সহজ টার্গেটে পরিণত হওয়ার ঝুঁকিতেও পড়ে যাচ্ছে। বিশ্বের দেশগুলো যদি কার্বন নিঃসরণের ক্ষেত্রে বরাবরের মতো মনোভাব দেখিয়ে যায়, তাহলে ২১০০ সাল নাগাদ মহাসাগরে অক্সিজেনের মাত্রা ৩-৪ শতাংশ কমে যাবে। গ্রীষ্মপ্রধান এলাকাগুলোয় এই হার হবে আরো অনেক বেশি। বেশিরভাগ ক্ষতি হবে সমুদ্রের প্রথম একহাজার মিটারের মধ্যে, যেখানে সবচেয়ে বেশি জৈববৈচিত্র রয়েছে। কম মাত্রার অক্সিজেনের ফলে গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য চক্রের মতো মৌলিক ক্ষেত্রেও হুমকি তৈরি হবে। ''আমরা যদি (সাগর থেকে) অক্সিজেন হারিয়ে ফেলি, তাহলে সেখানে প্রাণীগুলোর আবাসস্থল নষ্ট হবে, জৈববৈচিত্র নষ্ট হবে এবং আরো বেশি জেলিফিশের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি হবে,'' বলছেন মিন্না ইপস। ''এটা সেই সঙ্গে মহাসাগরের শক্তি এবং জৈব রাসায়নিক চক্র পাল্টে দেবে। ফলে আমরা এখনো জানি না, এসব জৈববৈচিত্রের এবং রাসায়নিক পরিবর্তন মহাসাগরের ভেতরে কী ঘটাবে?'' সমুদ্রে পরিবর্তনের এসব তথ্য বিশ্ব নেতাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে। ''মহাসাগরের অক্সিজেন কমে যাওয়ায় সমুদ্রের তাপমাত্রা ও অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার ফলে এর মধ্যেই ক্ষতির মুখে পড়েছে সমুদ্রের পরিবেশ,'' বলছেন গবেষণাটির সহ-লেখক ও আইইউসিএনের গবেষক ড্যান ল্যাফোলে। ''আমাদের ব্যাপকভাবে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কমাতে হবে। সেই সঙ্গে কৃষি খামার ও অন্যান্য উৎসের কারণে সমুদ্রে যে পুষ্টি-দূষণ হয় সেটাও বন্ধ করতে হবে।'' জলবায়ু পরিবর্তন এবং দূষণের কার���ে মহাসাগরগুলোতে অক্সিজেন কমে যাচ্ছে, যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে মাছের অসংখ্য প্রজাতি। +text: মরদেহের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা এক ধরণের যৌন ব্যাধি, যাকে ইংরেজিতে 'নেক্রোফিলিয়া' বলা হয় গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তি ঢাকার একটি হাসপাতালের মর্গের ডোমের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন বলে সিআইডি'র বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। সিআইডি'র ধারণা, অন্তত দেড় বছর ধরে মর্গে আসা নারীদের মরদেহের সাথে যৌন মিলন করে আসছিলেন অভিযুক্ত। যেভাবে ধরা পড়লো অভিযুক্ত সিআইডি'র বিবৃতিতে জানানো হয়, বাংলাদেশে ধর্ষণ, হত্যাসহ যেসব ঘটনায় মরদেহ ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়, সেসব আলামতের ডিএনএ পরীক্ষা এবং প্রোফাইল তৈরি করে থাকে সিআইডি। ২০১৯'এর মার্চ থেকে ২০২০'এর অগাস্ট পর্যন্ত একটি মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ থেকে পাওয়া মৃত নারীদের দেহে পুরুষ শুক্রানুর উপস্থিতি পায় সিআইডি। কিন্তু একাধিক নারীর মরদেহে একজন পুরুষের শুক্রানুর উপস্থিতি তাদের চমকে দেয়। তারা সেই পুরুষকে চিহ্নিত করার জন্য মাঠে নামে। বিবৃতিতে সিআইডি বলেছে, মরদেহে পাওয়া শুক্রানুর ওপর ভিত্তি করে সেই পুরুষের ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করা হয়। পরে ঢাকার মোহাম্মদপুর ও কাফরুল থানার কয়েকটি ঘটনা থেকে পাওয়া ডিএনএ প্রোফাইলের সাথে সন্দেহভাজন ব্যক্তির ডিএনএ প্রোফাইল মিলে যায় । প্রাথমিকভাবে সিআইডি'র ধারণা ছিল, প্রতিটি ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তি ভুক্তভোগীকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে অথবা হত্যার পর ধর্ষণ করেছে। আরো পড়তে পারেন: অত্যধিক যৌন আসক্তি কি আসলেই 'নেশা'? 'যৌন আকর্ষণ কী জিনিস সেটা আমি জানিনা' সেক্স কাল্ট গুরু রনিয়্যারিকে ১২০ বছরের কারাদণ্ড ভ্যাজাইনিসমাস: যে ব্যাধি যৌনমিলনে শুধুই যন্ত্রণা দেয় নানা দেশের মানুষের যৌনজীবন: মজার কিছু তথ্য তবে পরে আরও বিস্তারিত অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণের পর সিআইডি সিদ্ধান্তে পৌঁছায় যে কোনো একজন ব্যক্তি মরদেহের ওপর 'বিকৃত যৌন লালসা চরিতার্থ' করছে। পরে সিআইডি'র গোপন অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে যে প্রত্যেক ভুক্তভোগীর মরদেহের ময়নাতদন্ত একটি নির্দিষ্ট হাসপাতালের মর্গে করা হয়েছে। হাসপাতালটির মর্গের কার্যপদ্ধতি সম্পর্কে অনুসন্ধান করে সিআইডি জানতে পারে যে, ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে নেয়া মরদেহ ব্যবচ্ছেদ করার উদ্দেশ্যে পরের দিন মর্গে রেখে দেয়া হতো। মর্গের কার্যপদ্ধতি বিশ্লেষণ করার পর তদন্তকারীদের সন্দেহ হয় যে মর্গের ডোমদের কেউ অপরাধ সংঘটন করে থাকতে পারে। সন্দেহের ভিত্তিতে ঐ নির্দিষ্ট হাসপাতালের ডোমদের গতিবিধি পর্যালোচনা করে তদন্তকারীরা। ঐ তদন্তের সময় জানা যায় যে হাসপতালটির একজন ডোম পাঁচটি ঘটনার সময় ভুক্তভোগীর মরদেহ পাহারা দেয়ার জন্য রাতে মর্গে ছিল। এরপর বিস্তারিত তদন্তের পর তথ্য-প্রমাণের সাপেক্ষে সিআইডি নিশ্চিত হয় যে অভিযুক্ত ডোম এই অপরাধের সাথে জড়িত। অভিযুক্ত যুবক তদন্তের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে গা ঢাকা দেয়। পরে বৃহস্পতিবার রাতে সিআইডি তাকে গ্রেফতার করে। সিআইডি জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বীকার করেছে। ঢাকার একটি হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য নেয়া নারীদের মরদেহের সাথে 'যৌন লালসা চরিতার্থ' করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ, সিআইডি। +text: খাদ্যপণ্যের মান নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে সাধারণ মানুষ সেইসঙ্গে পণ্যগুলোর বিক্রি-বিতরণ ও বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন প্রচারেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তালিকাভুক্ত পণ্যগুলোর মধ্যে কয়েকটি বেশ জনপ্রিয় হওয়ায় উদ্বেগের মধ্যে আছেন সাধারণ ভোক্তারা। মিরপুরের বাসিন্দা জাহানারা বেগম জানান, "কয়েকটা পণ্য দেখলাম লিস্টে, সেগুলো আমি রেগুলার রান্নায় ব্যবহার করি।" "এখন ভাল ব্র্যান্ডগুলোর বিরুদ্ধেও যদি মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, আমরা সাধারণ মানুষ কোথায় যাব, কি খাব? এটা তো প্রতারণা!" এ ব্যাপারে সরকারের নিয়মিত ও কড়া নজরদারির প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা নাদিয়া হক উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, খাবারের সাথে আমাদের হেলথ (স্বাস্থ্য) ইস্যু জড়িত। "এই খাবার যদি নিম্নমানের হয়, তাহলে মানুষ কাদের উপর আস্থা রাখবে?" তিনি বলেন, "হেলথের [স্বাস্থ্যের] সাথে কোন কমপ্রোমাইজ চলে না।" দ্বিতীয় দফায় আরও ২২টি পণ্যকে 'নিম্নমানের' বলে ঘোষণা করেছে বিএসটিআই। রমজান মাস উপলক্ষে খোলা বাজার থেকে ৪০৬টি পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে সেগুলোর মান পরীক্ষা করে বিএসটিআই। প্রথম ধাপে ৩১৩টি পণ্যের মান পরীক্ষার পর ৫২টি পণ্যকে নিম্নমানের বলে ঘোষণা করে তারা। পরে কয়েকটি পণ্য মানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় বিএসটিআই। এরপর দ্বিতীয় দফায় অবশিষ্ট ৯৩টি পণ্যের মান পরীক্ষা করে প্রতিষ্ঠানটি। সেখানে নতুন করে উঠে আসে ২২টি পণ্যের নাম। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পণ্যগুলো বাজার থেকে তুলে নেয়া না হলে বিভিন্ন অংকের জরিমানার পাশাপাশি বিএসটিআই এর আইনের আওতায় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান বিএসটিআই-এর পরিচালক (সিএম) ইসহাক আলী। আরও পড়তে পারেন: যে ৫২টি পণ্য সরিয়ে নিতে বলেছে হাইকোর্ট নিষিদ্ধ পণ্য এখনও বাজারে, ক্রেতা-দোকানি অন্ধকারে মানহীন খাদ্য পণ্য এতদিন পর কেন আলোচনায়? কেনাকাটার জন্য শহরের সুপার শপগুলো বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নিম্নমানের অভিযোগ ওঠা পণ্যের তালিকা: এর মধ্যে থ্রি স্টার ফ্লাওয়ার মিল ও এগ্রো অর্গানিকের ওই পণ্য দুটি নিম্নমানের হওয়ায় প্রতিষ্ঠান দুটির লাইসেন্স বাতিল করে বিএসটিআই। ১১টি পণ্যের লাইসেন্স এর উপর স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিএসটিআই-এর কোনও লাইসেন্স ছাড়াই বাকি আটটি পণ্য বাজারজাত করায় সেগুলোর বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করার কথা জানিয়েছে সংস্থাটি। একটি প্রতিষ্ঠানের (ড্যানিশ ফুডস লিমিটেড, নারায়ণগঞ্জ) লাইসেন্স আগেই বাতিল করা হয়েছে। বিভিন্ন নামীদামী পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় উদ্বেগের মধ্যে আছেন ক্রেতা বিক্রেতারা। প্রথম দফায় ৫২টি পণ্যের নতুন করে পরীক্ষার ফলাফল প্রথম দফায় যে ৫২টি পণ্য কে নিম্নমান হিসেবে প্রমাণিত হয়েছিল সেগুলোর মধ্যে ৪৩টি পণ্যের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছিল। বাকি নয়টি পণ্যের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছিল। আর লাইসেন্স স্থগিতকৃত পণ্যের ৪২টি পণ্যের মধ্যে ২৬টি পণ্য পরবর্তী মান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় তাদের লাইসেন্স স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার কথা জানায় বিএসটিআই। লাইসেন্স বাতিল করা হয় ১৬টি পণ্যের। মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে তারা সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা তুলে ধরে। এ নিয়ে দুই দফায় ৪০৬টি পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে সেগুলোর মান পরীক্ষা করেছে বিএসটিআই। যেসব পণ্যের লাইসেন্স স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে: লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে যে পণ্যগুলোর: লাইসেন্স স্থগিতাকৃত প্রতিষ্ঠানসমূহ: খোলা বাজারে পণ্য বিক্রি করছেন এক বিক্রেতা। কী বলছে বিএসটিআই এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদফতর: বিএসটিআই এর এ ধরণের অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয় ভো���্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদফতরের মহা পরিচালক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম লস্কর। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, "বিএসটিআই তো মাঝেমাঝেই এরকম করে।... এই যেমন ৫২টা পণ্যকে প্রথমে নিম্নমানের বলার আগে তারা হয়তো দ্বিতীয়বার পরীক্ষা করে ডিসিশন দিতে পারতো। এইভাবে পণ্য ধ্বংস করা হলে তো সবকিছুর দাম বেড়ে যাবে।" এ ব্যাপারে বিএসটিআই এর পরিচালক (সিএম) ইসহাক আলী জানান, তারা প্রত্যেকটা পণ্য বিএসটিআই এর স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী যথাযথ আছে কিনা সেটাই তারা যাচাই করে দেখেন। যেসব পণ্যের স্ট্যান্ডার্ড প্যারামিটারে অসামঞ্জস্যতা পাওয়া গেছে সেগুলোকেই বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হয় বলে তিনি জানান। তবে কোন পণ্যকেই স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয়নি উল্লেখ করে মিস্টার আলী বলেন, "আমরা প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে সুযোগ দিয়েছি। যেন তারা পুনরায় মান উন্নয়ন করতে পারে।" "পরবর্তী পরীক্ষায় তারা উত্তীর্ণ হলে তারা আবার নিজেদের পণ্য বাজারে ছাড়তে পারবেন। তখন তাদের ওপর থেকে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হবে।" "তবে দ্বিতীয় দফার পরীক্ষাতেও যদি তারা অকৃতকার্য হয় তাহলে স্থায়ীভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে।" জানান মিস্টার আলী। পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। এদিকে বিএসটিআই- মান পরীক্ষা করে যে পণ্যগুলোকে নিম্নমানের বলে দাবি করেছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানান জাতীয় ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম লস্কর। তিনি বলেন, "আমরা প্রাথমিকভাবে পণ্যগুলো তুলে নিতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেব। এরপর জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা অভিযান চালানো হবে। সেখানে কোথাও এমন পণ্য পাওয়া গেলে তা ধ্বংস করা হবে।" এছাড়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানার পাশাপাশি যেসব দোকান এসব পণ্য বিক্রি করছে সেগুলোকে সাময়িক বন্ধ করা হতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তবে বার বার যেসব প্রতিষ্ঠানের পণ্যের নাম উঠে আসছে তারা যদি বেশি লাভ করার আশা বাদ দিয়ে সততার সাথে মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন করে তাহলে ভোক্তারা তাদের ওপর পুনরায় আস্থা ফিরে পাবে বলে মনে করেন মিস্টার লস্কর। অন্যদিকে ইসহাক আলী বলেছেন, "এসব অভিযানে ক্রেতা ভোক্তাদের সচেতনতা বাড়লেও ব্যবসায়ীদের নৈতিক চরিত্রে পরিবর্তন না হলে কোন লাভ হবে না।" দ্বিতীয় দফায় আরও ২২টি পণ্যকে 'নিম্নমানের' বলে ঘোষণা করেছে জাতীয় মান নির্ধারণকারী সংস্থা-বিএসটিআই। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বাজার থেকে পণ্যগুলো তুলে নিতে কোম্পানিগুলোকে মঙ্গলবার নির্দেশ দেয় সংস্থাটি। +text: প্যারিসের গ্র্যান্ড মসজিদে জুমার নামাজ। তিনি বলেন, যে সব গোষ্ঠী, প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তি ফ্রান্সের ঐক্য এবং ফরাসী প্রজাতন্ত্রের ‘ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধকে‘ হুমকিতে ফেলছে তাদের মোকাবেলার জন্য নতুন একটি আইন তিনি আনছেন। ফরাসী সমাজের ঐ কথিত শত্রু হিসাবে তিনি পরিষ্কার করেই চিহ্নিত করেছেন ‘কট্টর ইসলাম‘কে। প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁ বলেন, ফ্রান্সের ঐক্যের প্রধান বন্ধনই হচ্ছে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা।‘ “যারা ধর্মের নামে সেখানে ফাটল ধরাতে চায় তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়তে হবে,“ তিনি বলেন। ইসলাম সঙ্কটে ইসলামি স্কুলগুলোর ওপর নজরদারি বাড়ানো হবে পুরো ভাষণ ধরে মি ম্যাক্রঁ বলার চেষ্টা করেন তিনি ইসলাম ধর্ম বা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নন, কিন্তু একইসাথে ইসলাম ধর্ম নিয়ে গভীর শঙ্কা প্রকাশ করেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট। “বিশ্বজুড়ে ইসলাম একটি সঙ্কটে পড়েছে, এমনকি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশেও এই ধর্মটি সঙ্কটে।“ তিনি বলেন, “এই ধর্মটিকে এখন আমাদের সাহায্য করতে হবে যাতে তারা ফ্রান্স প্রজাতন্ত্রের অংশীদার হতে পারে।“ তিনি বলেন, ফ্রান্সে এমন একটি ইসলাম প্রতিষ্টা করতে হবে যার ভিত্তি 'জ্ঞানের আলো।' এ প্রসঙ্গে তিনি ফ্রান্সে রাষ্ট্র থেকে গির্জাকে আলাদা করার ঐতিহাসিক আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। মুক্ত ইসলাম ২০২২ সালে আবারো নির্বাচন করবেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁ সম্পর্কিত খবর: ফরাসী রাজনীতিকদের মুখে ইসলামের সংস্কার, ফ্রান্সের রাজনৈতিক-সংস্কৃতির সাথে খাপ খায় এমন ইসলামের কথা নতুন নয়। সাবেক ফরাসী প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজিও ‘ইসলাম পুনর্গঠনের‘ পরিকল্পনা করেছিলেন। শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁর কণ্ঠেও একই ধরনের সুর শোনা যায়। তিনি বলেন, "ফরাসী প্রজাতন্ত্রকে রক্ষা, এর মূল্যবোধ রক্ষা এবং সাম্য এবং মুক্তির জন্য প্রজাতন্ত্রের যে প্রতিশ্রুতি তা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা জরুরি।“ ফরাসী প্রেসিডেন্ট বলেন, ফ্রান্সের ৬০ লাখ মুসলিমের একটি অংশ একটি বিকল্প সমান্তরাল সমাজ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে যা বিপজ্জনক । “সমস্যা হচ্ছে একটি (ধর্মীয়) মতবাদ নিয়ে যেটি দাবি করছে যে তাদের নিজস্ব আইন প্রজাতন্ত্রের আইনের চেয়ে শ্রেয় ...বিদেশি প্রভাব থেকে ফরাসী ইসলামকে রক্ষা করতে হবে।“ মুসলিমদের প্রতিক্রিয়া ফ্রান্সের একটি উগ্র ডানপন্থী দল ইসলামবিরোধী মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কট্টর ইসলাম এবং ইসলামী সন্ত্রাস নিয়ে ফ্রান্স এবং ইউরোপের অন্যান্য দেশের নেতাদের মধ্যে উদ্বেগ, সমালোচনা শোনা যাচ্ছে, তবে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁর মত মূল ধারার মধ্যপন্থী একজন রাজনীতিকের মুখ থেকে ইসলাম নিয়ে এমন কথাবার্তায় অনেকেই অবাক হয়েছেন। ফ্রান্সের মুসলিম নেতারা তাদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থে মুসলিম বিদ্বেষীদের সূরে গলা মিলিয়েছেন, এবং তার প্রস্তাবিত আইন ফরাসী মুসলিমদের মূলধারার সমাজ থেকে আরো বিচ্ছিন্ন করবে। প্যারিস মসজিদের রেক্টর শামসেদ্দিন হাফিজ দৈনিক ল্য ম্যঁদ-এ এক উপ-সম্পাদকীয়তে প্রেসিডেন্টের পুরো বিবৃতি এবং তার প্রস্তাবিত আইনকে ‘ছল-চাতুরি‘ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে ইমেজ বাড়াতে এ ধরণের জনপ্রিয় কথাবার্তার বদলে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস দরকার। তিনি বলেন, মি ম্যাক্রঁ যেসব পরিবর্তনের কথা বলছেন, তা “রাষ্ট্রের ক্ষমতার আওতায় পড়েনা।“ মুসলমানদের অধিকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েও মিটিং-মিছিল হয়। ফরাসী মুসলিম এ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আমর লাসফার রয়টার্স বার্তা সংস্থার সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ইসলাম এবং মুসলিমদের নিয়ে মি ম্যাক্রঁ যেসব শব্দ এবং বিশেষণ ব্যবহার করেছেন তা আপত্তিকর। “তিনি মানুষের সামনে একটি বিপদ, ভীতি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন যার সাথে আমি একমত নই। তিনি শুধুই কট্টরপন্থা বা জঙ্গিবাদ নিয়ে কথা বলতে পারতেন। ‘ইসলামি জঙ্গিবাদ‘ শব্দটি ব্যবহার করে সমস্ত মুসলিমকে এক কাতারে ফেলে দেওয়া ঠিক হয়নি।“ লেখক গবেষক ব্রুনো ম্যাকায়েস টুইট করেছেন, “মি ম্যাক্রঁ ইসলাম সম্পর্কে তার মনোভাব চেপে রাখেননি। এখন শুধু কট্টর ইসলামই তার কাছে সমস্যা নয়, ইসলাম ধর্মই তার সমস্যা।“ ফরাসী মুসলিম মানবাধিকার কর্মী ইয়াসের লুয়াতি টুইট করেছেন, “মুসলিমরা এমনিতেই আক্রমণের হুমকিতে। এখন মি. ম্যাক্রঁ আরো আক্রমণের প্রতিশ্রুতি দিলেন। তার এক ঘণ্টার ভাষণে তিনি ধর্মনিরপেক্ষতাকে জলাঞ্জলি দিয়েছেন এবং কট্টর ডানপন্থী এবং মুসলিম বিদ্বেষী বামপ��্থীদের সুরে গান গেয়েছেন।“ প্রস্তাবিত আইনে কী থাকছে কট্টর ইসলাম থেকে ফরাসী সমাজকে রক্ষায় প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁ যে আইন আনার কথা ঘোষণা করেছেন, অক্টোবরের মাঝামাঝি নাগাদ তার একটি খসড়া চূড়ান্ত হবে বলে জানা গেছে। তবে প্রেসিডেন্টের বক্তব্য-বিবৃতি এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে যে ইসলামি শিক্ষা, মাদ্রাসা, ইসলামি প্রতিষ্ঠানে বিদেশী চাঁদা এবং কট্টর ইসলামি ভাবধারা প্রসারের বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারি এবং তা নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে: কেন এখন এই বিতর্কিত পদক্ষেপ দেশের ভেতর ইসলামী জঙ্গিবাদ নিয়ে ফ্রান্স বেশ কয়েকবছর ধরে সঙ্কটে রয়েছে। গত পাঁচ বছরে সন্ত্রাসী হামলায় ফ্রান্সে ২৫০ জনের মত মারা গেছে। এই সন্ত্রাস মোকাবেলায় ব্যাপারে সরকারের ভূমিকা নিয়ে জনমনে ক্ষোভ রয়েছে, এবং আগামী বছর স্থানীয় নির্বাচন এবং দু বছর পর সাধারণ নির্বাচনে বিষয়টি বড় ইস্যু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অনেক পর্যবেক্ষক বলছেন, অপরাধ এবং জঙ্গি ইসলামের বিরুদ্ধে তিনি ততটা শক্ত নন বলে যে অভিযোগ রয়েছে নির্বাচনের আগে তা খণ্ডনে তৎপর হয়েছেন মি. ম্যাক্রঁ। নতুন এক জনমত জরিপ বলে, কট্টর ইসলাম রুখতে প্রেসিডেন্টের প্রস্তাবিত আইনের প্রতি সিংহভাগ ফরাসীর সমর্থন রয়েছে। তবে সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে রয়টর্স বার্তা সংস্থা বলছে, সরকার এখন কট্টর ইসলামী ভাবধারা প্রসারের বিভিন্ন আলামত নিয়ে সত্যিই উদ্বিগ্ন। একজন কর্মকর্তা বলেন,"ফ্রান্সে অনেক মুসলিম পুরুষরা এখন নারীদের সাথে হ্যান্ডশেক করতে চাইছে না। মুসলিম প্রধান এলাকাগুলোতে সুইমিং পুলে নারী এবং পুরুষের জন্য আলাদা সময় বেঁধে দেওয়া হচ্ছে এমনকি চার বছর বয়সী বাচ্চা মেয়েদের মাথাতেও হিজাব চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অনুমোদিত মাদ্রাসার সংখ্যা বাড়ছে।" জানা গেছে, ক্যাফেটেরিয়া বা সুইমিং পুলে নারী-পুরুষকে পৃথক করাকে স্থানীয় কোনো মেয়র অনুমোদন দিলেও তা বাতিলের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে ক্ষমতা দেওয়া হবে। মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিচ্ছিন্নতা ইউরোপের মধ্যে ফ্রান্সে মুসলিমদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ফ্রান্সে মুসলিম জনসংখ্যা ৬০ লাখের মত যা সেদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮ শতাংশ। তাদের অধিকাংশই এসেছে আফ্রিকায় সাবেক ফরাসী সব উপনিবেশ থেকে। পর্যবেক্ষকরা বলেন, সাম্প্রতিক দশকগুলোতে দ্বিতীয় বা তৃতীয় প্রজন��মের ফরাসী মুসলিমদের ভেতর তাদের ধর্মীয় পরিচিতি প্রকাশের ব্যাপারে আকাঙ্ক্ষা বেড়েছে যা নিয়ে কট্টর ধর্মনিরপেক্ষ ফরাসী রাষ্ট্রের সাথে মুসলিমদের বিরোধ বাড়ছে। সেইসাথে মুসলিমরা সবসময় বৈষম্য, বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গির অভিযোগ করেন। কয়েক প্রজন্ম ধরে ফ্রান্সের নাগরিক হলেও শিক্ষা, চাকরি-বাকরিতে তারা অনেক পিছিয়ে। ফরাসী ইন্সটিটিউট অব ডেমোগ্রাফিক স্টাডিজের এক রিপোর্টে দেখা গেছে, প্রথম প্রজন্মের আলজেরিয়ান অভিবাসীদের মধ্যে ১৫% বেকারত্ব ছিল। সেই সংখ্যা এখন আরো বেড়ে ১৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ফলে, বৈষম্য নিয়ে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভের কারণেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফ্রান্সের মুসলিম সমাজের একটি বিরাট অংশের মধ্যে মধ্যে ধর্মীয় রক্ষণশীলতার প্রতি ঝোঁক বাড়ছে। ইসলাম এবং ফরাসী মুসলিমদের নিয়ে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁ শুক্রবার প্যারিসের কাছে অভিবাসী অধ্যুষিত একটি এলাকায় ঘন্টাখানেকেরও বেশি সময় ধরে তার এক ভাষণে যে ভাষায় কথা বলেছেন, যে শব্দ বা বিশেষণ ব্যবহার করেছেন - তার নজির ফ্রান্সে বিরল। +text: থাই কর্তৃপক্ষ যৌনাঙ্গ 'ফর্সা' করার চিকিৎসার বিরুদ্ধে সতর্ক করে দিয়েছে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এখনো 'ফর্সা' বা 'উজ্জ্বল' গায়ের রঙকে কালো বা শ্যামলা রঙের চেয়ে বেশি আকর্ষণীয় বলে মনে করা হয়। বিশেষ করে মেয়েদের বেলায় তাদের গায়ের রঙ সৌন্দর্য্যের অন্যতম মাপকাঠি বলে বিবেচিত হয়। থাইল্যান্ডেও গায়ের রঙ ফর্সা করার প্রবণতা দেখা যায় অনেক নারী-পুরুষের মধ্যে। কিন্তু 'পুরুষাঙ্গ' ফর্সা করার চেষ্টার কথা জানা গেলো এই প্রথম। একটি থাই হাসপাতাল অনলাইনে একটি ভিডিও পোস্ট করেছিল কিভাবে তারা পুরুষাঙ্গ ফর্সা করার কাজটি করে। এই ভাইরাল ভিডিওটি এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে মানুষের সোশ্যাল মিডিয়া টাইমলাইনে। থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে এভাবে 'লেজার রশ্মি' ব্যবহার করে পুরুষাঙ্গ 'ফর্সা' করার চেষ্টার বিরুদ্ধে সতর্কবাণী দিয়েছে। কেন এই ঝোঁক এভাবে পুরুষাঙ্গ ফর্সা করেছেন এমন একজনের সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসির থাই সার্ভিস। তিনি এর পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছেন, সুইমিং কস্টিউম পরে তিনি যখন সাঁতারে যান, তখন তিনি আরও বেশি 'আত্মবিশ্বাসী' বোধ করতে চান। তিরিশ বছর বয়সী এই ব্যক্তি দুই মাস আগে প্রথম পুরুষাঙ্গ ফর্সা করতে একটি ক্লিনিকে যান। তিনি দাবি ক���ছেন, তার পুরুষাঙ্গটির রঙ ইতোমধ্যে নিশ্চিতভাবেই ফর্সা হতে শুরু করেছে। মূলত লেজার রশ্মি ব্যবহার করে এই কাজটি করা হয়। মানুষের ত্বকে যে মেলানিন থাকে, লেজার দিয়ে সেটি ধ্বংস করা হয়। রঙ ফর্সা করার প্রবণতা অনেক পুরনো হলেও পুরুষাঙ্গ ফর্সা করার চেষ্টার কথা এই প্রথম জানা গেল যে ক্লিনিকটি এই পুরুষাঙ্গ ফর্সা করার এই 'চিকিৎসা' দিচ্ছে, তারা ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে এই পদ্ধতিটি ব্যাখ্যা করেছিল। পোস্টটি দুদিনেই ১৯ হাজার বার শেয়ার হয়েছে। সেখানে 'চিকিৎসার আগে' এবং 'চিকিৎসার পরের' ছবিও দেয়া আছে। ফেসবুকে এই পোস্টের নীচে নানা রকম মন্তব্য করেছেন অনেকে। বেশিরভাগেরই প্রশ্ন, 'এটা করতে হবে কেন?'। তবে কেউ কেউ এই প্রশ্নের মজার উত্তরও দিয়েছেন। একজন লিখেছেন, "এর ফলে এটিকে টর্চলাইট হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এটি উজ্জ্বল হয়ে উঠুক।" অবশ্য পুরুষাঙ্গ ফর্সা করার এই প্রবণতাকে নাকচ করে দিয়ে একজন নারী লিখেছেন, রঙ কালো না ফর্সা তা নিয়ে তিনি চিন্তিত নন। আরও পড়ুন: যে কোম্পানির হাতে ঝুলছে সৌদি আরবের ভাগ্য গণতন্ত্রে কী প্রভাব রাখলো ৫ই জানুয়ারি নির্বাচন ২০১৭ সালে যেসব ঘটনা আলোড়ন তুলেছিল থাইল্যান্ডের লেক্সাস হাসপাতাল অবশ্য পুরুষাঙ্গ নয়, মেয়েদের যৌনাঙ্গ ফর্সা করার সার্ভিসটাই আগে শুরু করেছিল। হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার পপল টানসাকুল বিবিসিকে জানান, চার মাস আগে তারা মেয়েদের যৌনাঙ্গ ফর্সা করার সার্ভিস শুরু করেন। "এরপর অনেকে আমাদের কাছে জানতে চান, পুরুষাঙ্গ ফর্সা করার সার্ভিস পাওয়া যাবে কিনা। কাজেই এরপর আমরা সেটাও চালু করেছি।" তিনি জানান, যৌনাঙ্গের রঙ ফর্সা করতে পাঁচটি সেশনের জন্য খরচ পড়ে সাড়ে ছয়শো মার্কিন ডলারের মতো। গড়ে মাসে বিশ-তিরিশ জন 'রোগী' তাদের কাছে এই সেবা নিতে আসেন। কম্বোডিয়া, মিয়ানমার এবং ফিলিপাইন থেকেও অনেকে এই সেবা নিতে আসেন। মিস্টার পপল জানান, "বিশেষ করে সমকামী এবং 'ট্রান্সভেস্টাইটস' মানুষদের মধ্যেই এটি বেশি জনপ্রিয়। তারা শরীরের সব অংশকে আকর্ষণীয় রাখতে চায়।" 'এটির প্রয়োজন নেই" থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে যৌনাঙ্গ ফর্সা করার এই প্রবণতার বিরুদ্ধে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, এটি একেবারেই 'অপ্রয়োজনীয়'। তারা বলছে, এর ফলে শরীরে নানা ধরণের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। ব্যাথা, ফুলে যাওয়া এবং দাগ পড়া এমনকি বন্ধ্যা ���য়ে যাওয়ার আশংকা আছে। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ড: থোংচাই কিরাটিহুত্যাকর্ণ বলেছেন, লেজার দিয়ে পুরুষাঙ্গ ফর্সা করা অর্থের অপচয়ই শুধু নয়, এটি ভালো চেয়ে আপনার মন্দই বেশি করবে।" রঙ ফর্সা করার এই চেষ্টাকে 'বর্ণবাদী' বলে সমালোচনা হচ্ছে 'বর্ণবাদী বিজ্ঞাপন' গায়ের রঙ ফর্সা করার এই চেষ্টা গত কয়েক দশকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অনেক বেড়েছে। লেক্সাস হাসপাতাল বলছে, তাদের পঞ্চাশ শতাংশের বেশি রোগীই আসলে আসেন রঙ ফর্সা করতে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় যাদের গায়ের রঙ ফর্সা নয়, তাদের শ্রমজীবী শ্রেণী থেকে আসা মানুষ বলে গণ্য করা হয়। যাদের গায়ের রঙ ফর্সা তারা কখনোই ক্ষেতে কাজ করেনি, এমনটাই ভাবা হয়। সেখানে বাজারে বহু ধরণের রঙ ফর্সা করার সামগ্রী পাওয়া যায় সেগুলোর বিজ্ঞাপন নিয়ে অতীতে অনেক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ব্যংককের একটি পাবলিক টয়লেটের ওপর এরকম একটি বিজ্ঞাপনে লেখা ছিল, "এই টয়লেট কেবল ফর্সা মানুষদের জন্য।" একটি থাই কসমেটিক কোম্পানিকে তাদের রঙ ফর্সা করার একটি ক্রিমের বিজ্ঞাপন প্রত্যাহার করতে হয়েছিল এটির বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচনার পর। বিজ্ঞাপনে একজন বিখ্যাত অভিনেত্রী দাবি করেছিলেন, এই ক্রিম ব্যবহারে তার গায়ের রঙ ফর্সা হয়েছে। এটিকে বর্ণবাদী বলে বর্ণনা করেছিলেন সমালোচকরা। ২০১৪ সালে মিস থাইল্যান্ড সুন্দরী প্রতিযোগিতায় যিনি জয়ী হয়েছিলেন, তার গায়ের রঙ কেন অন্যদের তুলনায় কালো তা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। তবে থাই মডেল ননথোয়ান মায়েয়া থোংলেং তখন বলেছিলেন, যে মেয়েরা তাদের গায়ের রঙ নিয়ে হীনমন্যতায় ভোগেন, তিনি চান তারা যেন এসব ঝেড়ে ফেলে আত্মবিশ্বাসী হন। গায়ের রঙ ফর্সা করার চেষ্টা এশিয়ার দেশগুলোতে নতুন কোন ব্যাপার নয়। কিন্তু থাইল্যান্ডের কিছু পুরুষ যেভাবে তাদের পুরুষাঙ্গ 'ফর্সা' করার চেষ্টা করছেন, তা শুনে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, দেশটির 'বিউটি ইন্ডাষ্ট্রি' আসলে সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে কীনা। +text: দুই বছর ধরেই এই বিতর্কটি চলছে যে চীন থেকে কার্ল মার্ক্সের ভাস্কর্যটি গ্রহণ করা হবে কিনা কম্যুনিস্ট মেনিফেস্টো বা ইস্তেহারের সহলেখক কার্ল মার্ক্সের জন্ম হয়েছিল জার্মানির যে ট্রিয়ার শহরে, তার দুইশোতম জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সেখানে ওই ভাস্কর্যটি স্থাপন করার কথা। কিন্তু তা নিয়ে শহরে পক্ষে বিপক্ষে বিতর্ক তৈর�� হয়েছে। শনিবার দুই পক্ষের লোকজনই শহরে মিছিল করার ঘোষণা দিয়েছে। কার্ল মার্ক্স লিখেছিলেন, শ্রেণী বৈষম্যের ওপর ভর করেই সব মানব ইতিহাস তৈরি হয়েছে। তার বক্তব্য নিয়ে ইউরোপে বিতর্ক থাকলেও, সেটি ঘিরেই চীনা সরকারের মূল আদর্শ তৈরি হয়েছে। তবে ট্রিয়ার শহরের কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে, ''আপনি যদি মার্ক্সকে সমালোচনা করতে চান, করতে পারেন, কিন্তু সহিংসতা বা ধ্বংসাত্মক কোন কর্মকাণ্ড করা যাবে না।'' ট্রিয়ারের একটি জাদুঘরে কার্ল মার্ক্সের 'দাস ক্যাপিটাল' গ্রন্থ কার্ল মার্ক্স নিয়ে কেন এই বিতর্ক? তার থিওরি বা মতাদর্শ ঘিরেই কম্যুনিজম বা সমাজতন্ত্রের মূল আদর্শ তৈরি হয়েছে, যেখানে সবকিছুর মালিক হবে সমাজ বা রাষ্ট্র এবং কোন শ্রেণী বিভেদ থাকবে না। যদিও সোভিয়েত ইউনিয়ন বা চীনের মতো সমাজতান্ত্রিক সরকার চালিত অঞ্চল বা দেশগুলো নির্যাতন আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অনেক কুখ্যাতি পেয়েছে। জার্মানির পূর্বাঞ্চল ১৯৪৯ সাল থেকে পুনর্মিলনের সময় ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সোভিয়েত নিয়ন্ত্রণে ছিল, যখন এই অঞ্চলটি ছিল ধনী পশ্চিম জার্মানির চেয়ে অনেক দরিদ্র। জার্মানির রাইনল্যান্ড-পালাটিনেট স্টেটের নেতা মালু ড্রেয়ার বলছেন, কার্ল মার্ক্সের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করার মানে তাকে সম্মাননা জানানো হয়, তার কর্ম নিয়ে আলোচনার একটি সুযোগ তৈরি হওয়া। কিন্তু ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্য-ক্লদ ইয়োঙ্কার বলেছেন, মার্ক্সকে এখন এমন অনেক কিছুর জন্য দায়ী করা হচ্ছে, যার জন্য তিনি দায়ী নন এবং সেসবের ক্ষেত্রে তার কোন ভূমিকা ছিল না। অনেক কিছুই তিনি লিখেছেন যার ঠিক উল্টোটা করা হয়েছে। ভাস্কর্য নিয়ে সমস্যা কোথায়? ট্রিয়ার শহরের কর্মকর্তারা বলছেন, ১৫ ফুট উঁচু এই ভাস্কর্যটি নিয়ে বিতর্ক চলছে প্রায় দুই বছর ধরে,যে চীনের উপহারটি গ্রহণ করা হবে কিনা। অনেকের অভিযোগ, চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে এই ভাস্কর্য গ্রহণ খাপ খায় না। শুক্রবার জার্মানির লেখকদের সংগঠন পেন বলেছে, চীনের নোবেল বিজয়ী লিউ শিয়াবোর বিধবা স্ত্রী লিউ শিয়াকে গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত ভাস্কর্যটি উন্মোচন করা উচিত হবে না। কোন অপরাধে অভিযুক্ত না হওয়া সত্ত্বেও ২০১০ সাল থেকে তাকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। তবে ট্রায়ারের মেয়র উলফ্রাম লেইবি বলেছেন, ''বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসাবেই এই উপহারটি আমরা গ্রহণ করেছি। কার্ল মার্ক্সকে নিয়ে আলোচনা করতে এই ভাস্কর্য মানুষকে উৎসাহ দেবে। হয়তো কিছু মনোভাব এবং ভ্রান্ত ধারণার পরিবর্তন হবে।'' জার্মানিতে কার্ল মার্ক্সের আরো স্থাপত্য রয়েছে। যে বাড়িতে তিনি জন্ম নিয়েছিলেন সেটি ছাড়াও বার্লিনের একটি পার্কে একটি ভাস্কর্য রয়েছে। প্রতিবছর ৪৫ লাখ পর্যটক ট্রায়ার শহরে আসে, যার মধ্যে ৫০ হাজার আসেন চীন থেকে। ৫ই মে শনিবার ভাস্কর্যটি উম্মোচন করার কথা রয়েছে মার্ক্সের বিষয়ে চীনের কেমন মনোভাব? কার্ল মার্ক্সকে আধুনিক সময়ের সবচেয়ে বড় মনিষী বলে শুক্রবার বক্তব্য দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তিনি বলেছেন, চীনের কম্যুনিস্ট পার্টির উচিত মার্ক্সিজমের শেকড়ে যাওয়া। মার্ক্স সবসময়েই এই দলের অভিভাবক এবং আদর্শ হিসাবে থেকে যাবেন। কার্ল মার্ক্সের থিওরির ওপর চীনের শিক্ষার্থী এবং সরকারি চাকুরীজীবীদের বাধ্যতামূলক কোর্স সম্পন্ন করতে হয়। তা সত্ত্বেও, চীনের পুঁজিবাদী ধরণে সেদেশে শত শত কোটিপতির তৈরি হয়েছে এবং দেশটিতে ধনী আর দরিদ্রের চরম ব্যবধান রয়েছে। কার্ল মার্ক্স কে ছিলেন? জার্মানির একজন ইহুদি আইনজীবীর পুত্র কার্ল মার্ক্স প্যারিসে গিয়ে বিল্পবী কম্যুনিস্ট হন এবং তার আজীবনের বন্ধু ফ্রেডরিক এঙ্গেলসের সঙ্গে পরিচিত হন। তারা দুজনে মিলে কম্যুনিস্ট মেনিফেস্টো বা ইস্তেহার লেখেন, যার মুল বক্তব্য হচ্ছে সব মানব ইতিহাস শ্রম বৈষম্যের ওপর তৈরি হয়েছে এবং বিশ্বের শ্রমিকদের ধনী সম্প্রদায়ের কাছ থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিতে হবে। এরপর কার্ল মার্ক্স লন্ডন চলে যান এবং দাস ক্যাপিটাল লেখেন, যেখানে বলা হয়, ব্যক্তিগত লাভের ওপর নির্ভরশীল অর্থনৈতিক পদ্ধতি হচ্ছে অস্থায়ী একটি ব্যবস্থা। শ্রমিকরা কারখানা মালিকদের মাধ্যমে শোষণের শিকার হন এবং তাদের শ্রমের পণ্যের মালিকানা পান না। তার মতে, তারা এসব মেশিনের চেয়ে সামান্য উন্নত জীবনযাপন করেন। ১৮৮৩ সালে কার্ল মার্কস মারা যান এবং তাকে লন্ডনের হাইগেট কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। চীন থেকে উপহার হিসাবে পাঠানো কাল মার্ক্সের একটি ভাস্কর্য নিয়ে জার্মানিতে বিভেদ শুরু হয়েছে। +text: মৌলভীবাজারে জঙ্গিদের অবস্থানের সন্দেহে দুটো বাড়িকে ঘিরে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। বেলা এগারটার পর থেকে অভিযানও শুরু হয়েছে । এরপর থেকে মাঝে মধ্যেই গুলি আর বিস্��োরণেরআওয়াজ শোনা যাচ্ছে। এর আগে সকাল সাড়ে দশটায় জেলার পুলিশ সুপার মো: রাশেদুল ইসলাম বিবিসিকে জানান অভিযান চলছে কিন্তু আবহাওয়া কিছুটা খারাপ হওয়ায় এটি শেষ হতে সময় লাগবে। স্থানীয় সাংবাদিকরা জানাচ্ছেন বৃষ্টি বন্ধ হলে বেলা বারটার দিকে অভিযান শুরু হয়। কাছাকাছি রয়েছেন ক্রাইমসিন ও সিআইডির কর্মকর্তারা। ওদিকে শহরের বরহাটে আরেকটি জঙ্গি আস্তানাকে একই ভাবে রেখেছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর আগে বারো ঘণ্টার বেশি সময় ঘিরে রাখার পর ফতেহপুরের জঙ্গি আস্তানায় বুধবার অভিযান শুরু করা হয়েছিলো। একসময় ব্যাপক গোলাগুলির শব্দও শোনা যায়। যে দুটি বাড়িতে অভিযান চলছে তার মালিক একই ব্যক্তি। আরও পড়ুন : মৌলভীবাজারের এক বাড়িতে অভিযান, তুমুল গুলি জঙ্গি: কুমিল্লাতেও একটি বাড়ি ঘিরে রেখেছে পুলিশ সাহসিকতার পুরষ্কার নিতে যুক্তরাষ্ট্রে ঝালকাঠির শারমিন স্থানীয় সাংবাদিকরা বলছেন আজ ভোর থেকেই জেলার বিভিন্ন স্থানে ঝড় বৃষ্টি হচ্ছে। অনেক জায়গায় রাস্তায় গাছ পড়ে আছে। পুলিশ বলছে মূলত আবহাওয়া পুরোপুরি অনুকুলে এলেই জঙ্গি আস্তার ভেতরে অপারেশন শুরু হবে। জঙ্গি আস্তানা ঘিরে এ অভিযানের নাম দেয়া হয়েছে 'অপারেশন হিটব্যাক"। ওদিকে কুমিল্লার কোটবাড়ীতেও জঙ্গি আস্তানা ঘিরে রেখেছে পুলিশ। আজ সেখানে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচন শেষ হলে সেখানে অভিযান শুরুর কথা জানানো হয়েছে। মৌলভীবাজারের ফতেহপুরের জঙ্গি আস্তানার আশপাশের বাড়িঘর থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। +text: ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে রাইফেলের ওপর বসানো টেলিস্কোপের ভেতর দিয়ে তোলা ভিডিওটি ইসরায়েলি টিভিতেও ব্যাপক প্রচার পায় এবং ইসরায়েলি রাজনীতিবিদরাও এর নিন্দা করেছেন। সামরিক বাহিনী বলেছে, ভিডিওটি সম্ভবত গাজা-ইসরায়েল সীমান্তে তোলা এবং কয়েক মাস আগের ঘটনা। এমন এক সময় একজন ফিলিস্তিনিকে গুলি করার ভিডিওটি বেরুলো যখন গাজায় উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। সোমবার প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, তিন জন লোক একটা বেড়া বা প্রতিবন্ধকের দিকে এগিয়ে আসছে। এর পর একটা গুলি করার মত শব্দ শোনা যায়। সাথে সাথে তিন জন লোকের একজন - যে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল এবং দৃশ্যত: নিরস্ত্র ছিল - সে মাটিতে পড়ে যায়। এর পর হিব্রু ভাষায় একজনকে উল্লসিতভাবে বলতে শ��্না যায়: "ওয়াও - দারুণ ভিডিও, হ্যাঁ। কুকুরের বাচ্চা! কি দারুণ একটা ভিডিও!" বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: গাজায় ফিলিস্তিনি-ইসরায়েলি সংঘাতে এত মৃত্যু কেন? আরবদের হটিয়ে যেভাবে ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল গাজা-ইসরায়েল সীমান্তে বেশ কিছুদিন ধরেই বিক্ষোভ চলছে এর পর বেশ কিছু লোককে দেখা যায় দৌড়ে গুলি-খাওয়া লোকটিকে উদ্ধার করতে যাচ্ছে। সে বেঁচে আছে কিনা তা স্পষ্ট নয়। ইসরায়েলের চ্যানেল-টেন টেলিভিশনে এটা প্রথম দেখানো হয়, এর পর এটি অনলাইনে 'ভাইরাল' হয় অর্থাৎ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, এবং ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়। গত দু' সপ্তাহ ধরেই গাজা সীমান্তে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের সময় যেভাবে তাদের ওপর ইসরায়েল গুলি চালাচ্ছে - তার ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। এসব গুলিবর্ষণে বহু ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েল বলছে, যারা সীমান্তের বেড়া টপকানোর চেষ্টা করেছে বা অস্ত্র ও বিস্ফোরক ব্যবহার করেছে - শুধু তাদের বিরুদ্ধেই তাজা বুলেট ব্যবহার করা হচ্ছে। ভিডিওটি দেখার পর ইসরায়েলি আরব এমপি আয়মান ওদেহ টুইট করেন - মানুষের মনকে আতংকিত করে, যাতে দেখা যাচ্ছে - যে লোকটি কাউকে কোন হুমকি দেয় নি তাকে হত্যা করে উল্লাস করা হচ্ছে।" তিনি দায়ী ব্যক্তিদের বিচার দাবি করেন। ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির ইয়েহুদা গ্লিক বলেন, "ভিডিওটি দেখা খুব কঠিন, এটা আমাদের বিচলিত ও মর্মাহত করে।" অন্য অনেকে আবার অন্যরকম মতও দেন। জননিরাপত্তা মন্ত্রী জিলাদ এরদান বলেন, "এ ভিডিও নিয়ে এত হৈচৈ-এর কি আছে?" তেলআবিবে 'আরাম কেদারায় বসে যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি বিচার করার' সমালোচনা করেন তিনি। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এর তদন্ত করার কথা বললেও মানবাধিকার গ্রুপ বিটিসেলেম বলেছে, সামরিক তদন্তের ওপর তাদের খুব কমই আস্থা আছে। আরো পড়তে পারেন: কেন বিভক্ত হয়ে পড়লো কোটা সংস্কারের আন্দোলন? ৮৫ হাজার বছর আগে সৌদি আরবে কারা থাকতো? ইন্টারনেটে কে আপনাকে অনুসরণ করছে? দৃশ্যত: নিরস্ত্র একজন ফিলিস্তিনিকে গুলি করে ইসরায়েলি সৈন্যরা উল্লাস করছে - এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা এর তদন্ত করছে। +text: চকবাজারে নিহত স্বজনদের আহাজারি। কিন্তু শহরের মতো গ্রামের বিভিন্ন স্থাপনায় নানা কারণে আগুন লাগে। বহু মানুষ হতাহতও হয় কিন্তু সেই সব ঘটনা খবরে শিরোনাম হিসেবে উঠে আসে কমই। গ্রামীণ জনগণের মধ্যে অগ্নি সচেতনতা বাড়াতে মোহাম্মদ আলী গাজী দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন। তিনি 'অগ্নি প্রতিরোধ সংস্থা' নামে যশোরের একটি এনজিওর নির্বাহী পরিচালক। সংস্থাটি মূলত আগুন সম্পর্কে গ্রামের মানুষকে সচেতন করতে কাজ করে। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলছেন, যদি কমিউনিটি ফায়ার সার্ভিস থাকতো তাহলে, তাহলে চকবাজারের আগুন মোকাবেলা করা সম্ভব হতো। ছবিতে পুরনো ঢাকার চকবাজারের আগুন প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় চকবাজারের আগুন আগুন নেভাতে দমকলকর্মীদের জন্য উন্নত সব কৌশল চকবাজার অগ্নিকাণ্ড: আগুন সম্পর্কে যা বলছে সরকার পুরনো ঢাকার অগ্নিকান্ড গ্রামে সাধারণত দুর্ঘটনার ধরণ কেমন? মোহাম্মদ আলী গাজী বলছেন, কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের জন্য পুরোপুরি দায়ী অসচেতনতা কিংবা অবজ্ঞা করা। "গ্রামে সাধারণত দেখা যায় যে নারীরা রান্না করছেন বাচ্চাকে চুলার পাশে রেখে। দেখা যায় হুট করে বাচ্চার আগুন লেগে যায়। শীতকালে আগুন পোহানোর সময় কিংবা মশার কয়েল থেকে আগুন লেগে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে"। তিনি বলেন, আগে শর্ট সার্কিট তেমন ছিলোনা কিন্তু বিদ্যুতের সম্প্রসারণের পর এখন অনেক ক্ষতি হচ্ছে শর্ট সার্কিট থেকে। "এছাড়া ধান সিদ্ধ করার সময় বা আলু পোড়ানোর সময় দুর্ঘটনা ঘটে। অনেকে আগুন বিশেষ করে মোমবাতি নিয়ে খেলা করা।" মোহাম্মদ আলী গাজী বলছেন, গ্রামের মানুষ মোটেই সচেতন না। তার জরিপ অনুযায়ী, প্রতি বছর এক লাখ ৬০ হাজার মানুষ দুর্ঘটনা থেকে মারা যায়। "জ্বলন্ত চুলা, জ্বলন্ত সিগারেট, গ্যাস সিলিন্ডার, বাজি পোড়ানো, আলোকসজ্জা, ইঞ্জিনের মিস ফায়ার অগ্নিকাণ্ডের প্রধান কারণগুলোর অন্যতম। অনেক সময় গ্রামে ঘুরে বেড়ানো মানসিক অসুস্থরা ব্যক্তিরাও আগুন লাগিয়ে দেন - এমন ঘটনাও ঘটছে।" একটি আবাসিক ভবনে এমন আগুন সমাধান ও কমিউনিটি ফায়ার সার্ভিস মোহাম্মদ আলী গাজীর মতে, আগুন বা অগ্নিজনিত দুর্ঘটনা এড়াতে বাতাস, তাপ ও দাহ্য পদার্থ আলাদা রাখতে হবে। "এগুলো এক হলেই অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এগুলো যাতে এক জায়গায় না থাকে সেজন্য দরকার কমিউনিটি ফায়ার সার্ভিস।" "যেমন অফিস আদালত মিল কারখানায় যারা কাজ করে তাদের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের লোক নিয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। তাদের সমন্বয়ে এ ধরণের কমিউনিটি ফায়ার সার্ভিস হতে পারে।" তার মতে, প্রশিক্ষণ থাকলে কমিউনিটি ফায়��র সার্ভিসের সাথে জড়িত লোকজনই অন্যদের বলতে পারবে যে গ্যাস আলাদা রাখেন, বয়লার আলাদা, প্লাস্টিক আলাদা রাখেন, চুলা যেনো জ্বালানো না থাকে। "অগ্নিকাণ্ড ঘটলে প্রাথমিক পদক্ষেপ তারা নিতে পারবে আর সাথে সাথে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেবে এবং প্রয়োজনে তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনবে।" চকবাজারের আগুনও ঠেকানো যেতো? মোহাম্মদ আলী গাজীর বিশ্বাস কমিউনিটি ফায়ার সার্ভিস সক্রিয় থাকলে চকবাজারের এই আগুন আগেই ঠেকানো যেতো। "এতো বড় দুর্ঘটনা বা এতো মানুষের মৃত্যু হতোনা। কমিউনিটি ফায়ার সার্ভিস থাকলে তারাই তিনটি জিনিস আলাদা রাখতে উদ্বুদ্ধ করতো। তারাই বাড়ির মালিকদের নিয়ে দাহ্য পদার্থ আলাদা রাখার ব্যবস্থা করতো।" তিনি বলেন, কমিউনিটি ফায়ার সার্ভিসে সব ধরনের লোক থাকতে হবে এবং ফায়ার সার্ভিস তাদের প্রশিক্ষণ দিবে। আর সরকার বা দাতা সংস্থা আর্থিক সহায়তা দিতে পারে। আগুন নেভানোর চেষ্টা ফায়ার লাইসেন্স: নিরাপত্তার পাশাপাশি রাজস্ব আয় ঢাকাসহ সারা দেশে ব্যবসা করার জন্য বা দোকান পাটের জন্য সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভা বা এ ধরণের প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। মোহাম্মদ আলী গাজী বলছেন, ট্রেড লাইসেন্সের সাথে ফায়ার লাইসেন্স নেয়ারও নিয়ম করা উচিত। "এতে করে দোকান পাট বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা যেমন থাকবে তেমনি বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় হবে সরকারের। বাংলাদেশে ফায়ার লাইসেন্সে অনিয়ম অনেক। এ অনিয়মও দূর করতে হবে।" তিনি বলেন, একদিকে কমিউনিটি ফায়ার সার্ভিস অন্যদিকে ফায়ার লাইসেন্স- এ দুটি ব্যবস্থা করতে পারলে ভয়াবহ আগুনের সম্ভাবনা কমে আসবে অনেকখানি। আরো পড়ুন: ভয়াবহ আগুনে নিহত ৭৮, স্বজনরা লাশ পাবেন কিভাবে? চকবাজার অগ্নিকাণ্ড: হতাশা, ক্ষোভ আর যত সুপারিশ পুরনো ঢাকার চকবাজারে ভয়াবহ আগুনের দৃশ্য বাংলাদেশে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বললে প্রথমেই শিল্প প্রতিষ্ঠান কিংবা শহরের বাসাবাড়িতে আগুন লাগার ছবি মনে ভেসে ওঠে। +text: করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়ায় চীনে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বিবিসি বাংলার কাদির কল্লোলকে বলেছেন বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং সেটি চীনে গিয়ে বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনবে। "প্রয়োজনে আরও ফ্লাইট পাঠানো হবে। উহানসহ কয়েকটি শহরে যেসব বাংলাদেশির নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে তাদের মধ্যে ৩৭০ জনকে দেশের আনার চেষ্টা হচ্ছে।" মি. মোমেন বলছেন তাদের আনা হলে ঢাকায় হজ্ব ক্যাম্প ও উত্তরার একটি হাসপাতালে আলাদা করে বিশেষ পর্যবেক্ষণে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রাখা হবে। "আমরা শনিবারই তাদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে প্রস্তুত। তবে তারপরেও চীন সরকারের সম্মতির একটি বিষয় আছে। তার ওপরই সবকিছু নির্ভর করবে।" বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: লক্ষণ, প্রতিরোধ ও আরো দশটি তথ্য নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? মাস্ক পরে কি ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানো যায়? চীনের উহানসহ আরও কয়েকটি শহরে আটকে পড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩৭০জনকে শনিবার ফিরিয়ে আনার কথা নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। +text: লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়েয়া। বুধবার থেকে নিজের কার্যালয় বাদ দিয়ে বাড়ি থেকে রাষ্ট্রীয় কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়েয়া। আর তার কারণ হল দুটো কালো সাপ। এর আগেও একবার কার্যালয় ছাড়তে হয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্টকে। এরপর আর ফিরতেই পারেন নি সেখানে। তার কারণ হল ২০০৬ সালে এক অগ্নিকাণ্ডে প্রেসিডেন্টের দফতর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর থেকে লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট দেশটির পররাষ্ট্র দফতরে বসছেন। আরো পড়ুন: সাপ কেন মানুষের ঘরে এসে বাসা বাঁধে সাপের বিষ শরীরে নিয়ে ডায়েরি লিখে গেছেন যিনি টয়লেটে বসে সাপের কামড় খেলেন তিনি প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের গণমাধ্যম বিষয়ক কর্মকর্তা স্মিথ টোবি জানিয়েছেন বুধবার ভবনটির অভ্যর্থনা এলাকার দেয়ালের একটি গর্ত থেকে দুটো কালো সাপ বের হয়ে আসে। স্থানীয় গণমাধ্যমে কর্মচারীদের তোলা একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে দুটি সাপ ধীরে ধীরে নড়ছে। দুটো কালো সাপের কারণে বাড়িতে বসে কাজ করছেন লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট। আর সবাই ভয়ে দুরে দাঁড়িয়ে দেখছে। এখন সেগুলোকে তাড়ানোর চেষ্টা চলছে। মি. টোবি জানিয়েছেন গর্তে ধোঁয়া দিয়ে তাদের বের করে আনার চেষ্টা চলছে। তিনি বলছেন অনেক পুরনো ভবন যার পানি বা পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা থেকে সাপ দুটি এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাপগুলো এখনো ভবনে আছে কিনা সেটিও বোঝা যাচ্ছে না। অন্তত ২২ এপ্রিল পর্যন্ত সবাইকে দুরে থাকতে বলা হয়েছে। তবে সাপগুলো মারা না হলেও প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়েয়া কার্যালয়ে ফিরবেন বলে জানাচ্ছেন মি. টোবি। অন্যান্য খবর: যৌন নির্যাতন: শিশুদের কীভাবে সচেতন করবেন ফেসবুকে নারীদের মত প্রকাশ কতটা নিরাপদ? শেয়ারের দরপতনে ক্ষতির মুখে বহু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী পৃথিবীতে নির্বাচন, রাজনৈতিক বিরোধ, সামরিক হস্তক্ষেপ এরকম নানা কারণে অনেক দেশের প্রেসিডেন্টকে তাদের কার্যালয় ছাড়তে হয়েছে। কিন্তু লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্টকে অফিস ছাড়তে হয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক কারণে। +text: অনেক বিশেষজ্ঞ ধারণা করছেন ফ্রিজে অনেকদিন করোনাভাইরাস টিকে থাকতে পারে এই ভাইরাস কোন ধরণের সমতলে কতক্ষণ বেঁচে থাকে, হাঁচি-কাশির মাধ্যমে কত দ্রুত ছড়ায়, কোন ধরণের আবহাওয়া বা তাপমাত্রায় এর প্রকোপের কতটা তারতম্য হয় - এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা একেকবার একেক মত দিয়েছেন, আবার নতুন গবেষণা প্রকাশিত হওয়ার প্রেক্ষিতে দফায় দফায় বিশেষজ্ঞদের মত পরিবর্তন করার ঘটনাও ঘটেছে। শুরুতে একসময় মানুষের ধারণা ছিল যে উচ্চ তাপমাত্রায় এই ভাইরাস বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারে না, তবে এই দাবির কোনো প্রমাণ বৈজ্ঞানিক ভিত্তি পাওয়া যায়নি শেষ পর্যন্ত। সেরকম আরেকটি ধারণা হলো, ফ্রিজের ভেতরে অন্যান্য স্থানের তুলনায় অপেক্ষাকৃত বেশি সময় ভাইরাসটি বেঁচে থাকতে পারে। তবে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত অন্যান্য মতবাদের মত এই বিষয়টি নিয়েও শতভাগ নিশ্চিত হতে পারেনি বিজ্ঞানীরা। ফ্রিজে কি করোনাভাইরাস বেশি সময় ধরে টিকে থাকে? এর আগে যেসব করোনাভাইরাস পরিবেশে ছিল, সেগুলোর কয়েকটি প্রজাতি হিমাঙ্কের নীচে তাপমাত্রায় পুরোপুরি কার্যকরভাবে বেঁচে না থাকলেও স্থিতিশীল অবস্থায় টিকে থাকে বলে প্রমাণ পেয়েছিল বিজ্ঞানীরা। ২০১০ সালে আমেরিকান সোসাইটি অব মাইক্রোবায়োলোজি'র এক গবেষণায় উঠে আসে যে সার্স করোনাভাইরাস (যেটি অনেকটা কোভিড-১৯ ভাইরাসের মত) ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় (প্রায় ৪.৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) যেরকম আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা থাকে, ঐ পরিবেশে টিকে থাকতে পারে। সাধারণত গৃহস্থালিতে যেসব রেফ্রিজারেটর ব্যবহার করা হয়, সেগুলোতে এই তাপমাত্রা থাকে। রেমডেসিভির ওষুধের প্রচারণা নিয়ে সতর্ক হবার আহ্বান বিশেষজ্ঞদের ব্যবহৃত মাস্ক-গ্লাভস যত্রতত্র ফেলে যে ক্ষতি করছেন বাড়িতে বসে কোভিড-১৯ চিকিৎসা: যে ছয়টি বিষয় মনে রাখবেন যেসব ভুয়া স্বাস্থ্য পরামর্শ এড়িয়ে চলবেন নিজেকে যে��াবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে ফ্রিজে রাখার পরে তো বটেই, ফ্রিজে রাখার আগেও সব খাদ্যপণ্য অথবা পণ্যের প্যাকেট অন্তত একবার জীবাণুমুক্ত করে নেয়া জরুরি, বলছেন অনেক বিশেষজ্ঞ গবেষণায় উঠে আসে, তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আর্দ্রতা ২০ শতাংশের নীচে হলে সার্স করোনাভাইরাস প্রায় ২৮ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকে, যেখানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর আর্দ্রতা ৮০ শতাংশ হলে ভাইরাসটির স্থায়িত্বকাল থাকে ৬ ঘণ্টার মত। অনেক বিশেষজ্ঞ এই প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে আর পরবর্তী গবেষষণার জন্য অপেক্ষা না করে ফ্রিজ ব্যবহারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। তারা বলছেন কাছাকাছি প্রজাতির একটি করোনাভাইরাস যেহেতু ফ্রিজে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে পারে, কাজেই নভেল করোনাভাইরাসেরও একই বৈশিষ্ট্য থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। স্যান ফ্র্যান্সিসকোর গ্ল্যাডস্টোন ইনস্টিটিউটের রিসার্চ সাইন্টিস্ট ও ভাইরোলজিস্ট ড. ওয়ার্নার গ্রিন গত এপ্রিলে মার্কিন সংবাদ সংস্থা এনবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন করোনাভাইরাস চরিত্রগতভাবে একটি 'আঠালো' ভাইরাস। ঐ সাক্ষাৎকারে ড. গ্রিন বলেছিলেন, "এই ভাইরাস (সার্স) বিভিন্ন সমতলে আশ্চর্জজনকভাবে লম্বা সময় টিকে থাকে।" বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ভাইরোলজিস্ট নজরুল ইসলাম বলেন নভেল করোনাভাইরাস ফ্রিজে কতদিন বেঁচে থাকতে পারে সেসম্পর্ক না জানা গেলেও ফ্রিজের আবহাওয়ায় অন্য জায়গার তুলনায় অপেক্ষাকৃত বেশি সময় বাঁচতে পারে বলে ধারণা করা যায়। তিনি বলেন, "এটি যেই ধরণের ভাইরাস, তা সাধারণত ফ্রিজের পরিবেশে বেশি সময় বাঁচতে পারার কথা। কিন্তু সেখানে ঠিক কতদিন বাঁচতে পারবে, এ ধরণের কোনো গবেষণা এখনো নেই।" তবে সার্স করোনাভাইরাস নিয়ে করা গবেষণার ভিত্তিতে নভেল করোনাভাইরাসের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা তৈরি করতে চান না বিশেষজ্ঞদের অনেকেই। এপ্রিলে অস্ট্রেলিয়ার এবিসি রেডিওকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি চিফ মেডিক্যাল অফিসার মাইকেল কিড বলেন নভেল করোনাভাইরাস ফ্রিজে টিকে থাকতে পারে কিনা আর থাকলেও কতক্ষণ টিকে থাকতে পারে, তা গবেষণার আগে বলা সম্ভব না। তিনি বলেন, "সার্স করোনাভাইরাস নিয়ে গবেষণা হলেও নভেল করোনাভাইরাস সম্পর্কে তেমন কোনো গবেষণা হয়নি। কাজেই আমরা নিশ্চিতভাবে জানি না যে এই ভাইরাসটির বৈশিষ্ট্য সার্স করোনাভাইরাসের মত কি না।" তাই তিনি ফ্রিজ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু সাধারণ সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেন। ফ্রিজে রাখা শাকসবজি রান্না করার আগে কিছুক্ষণ সাবান মিশ্রিত পানিতে রেখে ধুয়ে নেয়ার উপদেশ ফ্রিজ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কী ধরণের সতর্কতা নেবেন? এবিসি রেডিওকে দেয়া সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক মাইকেল কিড মন্তব্য করেছিলেন যে ফ্রিজে রাখার পরে তো বটেই, ফ্রিজে রাখার আগেও সব খাদ্যপণ্য অথবা পণ্যের প্যাকেট অন্তত একবার জীবাণুমুক্ত করে নেয়া জরুরি। "বাইরে থেকে বাজার ঘরে এনে ফ্রিজে রাখার আগে জীবাণুমুক্ত করার পাশাপাশি বারবার হাত ধোয়ার বিষয়টিও মনে রাখতে হবে সবাইকে," বলেন মাইকেল কিড। সার্স করোনাভাইরাসের মত, ফ্রিজে রাখা খাদ্যপণ্যের গায়ে বা প্যাকেটে নভেল করোনাভাইরাস লেগে থাকলে তা সপ্তাহ চারেক বেঁচে থাকতে পারে বলে মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞ। তাই বাজার করার পর পণ্য ফ্রিজে রাখার আগে ও ফ্রিজ থেকে বের করার পর তা জীবাণমুক্ত করার ব্যাপারে জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ভাইরোলজিস্ট নজরুল ইসলাম বলেন, "ফ্রিজে রাখা খাবারের প্যাকেট বের করার পর প্যাকেটটি জীবাণুনাশক মেশানো কাপড় দিয়ে ভালো করে মুছে নেয়া প্রয়োজন।" ফ্রিজে রাখা শাকসবজি রান্না করার আগে কিছুক্ষণ সাবান মিশ্রিত পানিতে রেখে ধুয়ে নেয়ার উপদেশ দেন তিনি। তবে মাছ বা মাংসের ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয় বলে মাছ-মাংস যেই প্যাকেটে বা পাত্রে রাখা হবে, সেটিকে জীবাণুমুক্ত করে নেয়া জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি। "এছাড়া যারা ফ্রিজ থেকে বের করা মাছ-মাংস কাটাকাটির দায়িত্বে থাকবেন, তাদের আক্রান্ত হওয়ার বেশি ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।" নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ফ্রিজ থেকে খাবার বের করা এবং রান্নার কাজ করার সময় বারবার হাত ধোয়ার অভ্যাস তৈরি করার উপদেশ দেন তিনি। "ফ্রিজ থেকে বের করা মাছ-মাংস নিয়ে কাজ করবেন যারা, তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং নিয়মিত ভিত্তিতে হাত ধোয়ার মত বিষয়গুলো মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ। যেই কাজে ভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে, সেরকম প্রত্যেকটি ছোট ছোট কাজ শেষে মনে করে হাত ধোয়া জরুরি।" গত বছরের শেষভাগে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত সারাবিশ্বে চার লাখের বেশি মানুষ মারা গেলেও এই ভাইরাসের উৎস, চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য, গতিপ্রকৃতি বা বিবর্তনের ধরণ সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেনি বিজ্ঞানীরা। +text: মানবদেহের কোষে বিভি'র জীবাণু। প্লস বায়োলজি নামে এক জার্নালে এই গবেষণার বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে এবং এতে বলা হচ্ছে যে ওরাল সেক্সের মাধ্যমে নারী দেহে এই রোগ বাসা বাঁধে। তবে বিভি কোন সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ বা যৌনরোগ নয়। নারীর ভ্যাজাইনা বা যোনিতে সাধারণ যেসব ব্যাকটেরিয়া থাকে, সেখানে কোন ভারসাম্যের অভাব দেখা গেলে বিভি হতে পারে। যারা এই রোগের শিকার হন, তাদের দেহে বিভি'র কোন উপসর্গ নাও দেখা যেতে পারে। তবে তাদের যোনি থেকে দুর্গন্ধযুক্ত রস নিঃসৃত হয়। মানুষের মুখে যেসব ব্যাকটেরিয়া থাকে তা নারীর যৌনাঙ্গে ছড়িয়ে পড়লে কী প্রভাব পড়ে, এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা সেটাই দেখার চেষ্টা করেছেন। ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস কী? বিভি এমনিতে কোন সিরিয়াস অসুখ না। তবে যেসব নারী বিভি-তে আক্রান্ত হন, তারা অন্যান্য যৌনরোগের শিকার হতে পারেন এবং তাদের মূত্রনালিতে সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। সন্তানসম্ভবা নারীর ক্ষেত্রে বিভি-তে আক্রান্ত নারীর সন্তান স্বাভাবিক সময়ের আগেই জন্ম নেয়ার ঝুঁকি রয়েছে। কীভাবে জানবেন আপনার বিভি হয়েছে? বিভি নারী স্বাস্থ্যের একটা সাধারণ সমস্যা। যাদের ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস হয়, তাদের যোনি থেকে এক ধরনের রস নিঃসৃত হয় এবং তাতে উৎকট আঁশটে গন্ধ থাকে। যোনি থেকে যে স্বাভাবিক রস বের হয়, বিভি হলে তার রঙ এবং ঘনত্বে পরিবর্তন দেখা যায়। সেই যোনি রস পাতলা পানির মত হয় এবং দেখতে অনেকটা ঘোলাটে সাদা হয়। আপনার বিভি হয়েছে কিনা, তা আপনার ডাক্তার বলে দিতে পারবেন। যোনি রসের নমুনা পরীক্ষা করে বিভি-র উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। পরীক্ষায় সংক্রমণের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেলে অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট, জেল কিংবা ক্রিম ব্যবহার করে সংক্রমণ দূর করা হয়। নতুন গবেষণায় কী জানা যাচ্ছে? বিভি নেই যেসব নারীর, তাদের যোনিতেও বহু 'ভাল' ব্যাকটেরিয়া থাকে। এদের বলা হয় ল্যাকটোব্যাসিলাই। এরা পিএইচ লেভেল কমিয়ে যোনিপথের অ্যাসিডিক বা অম্ল ভাব ধরে রাখে। কিন্তু কখনও কখনও এই স্বাস্থ্যকর ভারসাম্যটি বিনষ্ট হলে যোনিতে অন্যান্য জীবাণুর বংশবৃদ্ধি বেড়ে যায়। এ রকমটা কেন ঘটে, তা পুরোপুরিভাবে স্পষ্ট না। তবে নীচের কারণগুলোর জন্য বিভি হতে পারে: আরও পড়তে ��ারেন: কুমারীত্ব পুনরুদ্ধার: কেন নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে? ভারতে ঋতুমতী নারীরা কেন জরায়ু ফেলে দিচ্ছেন? নারী স্বাধীনতা বলতে কী বোঝেন নারীরা এবং পুরুষেরা? প্লস বায়োলজি সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে, মানুষের মুখ গহ্বরে মাড়ির রোগ কিংবা ডেন্টাল প্লেক থাকলে তাতে যে ব্যাকটেরিয়া দেখা যায়, তার কারণে ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস হতে পারে। এই ব্যাকটেরিয়ার ক্ষতিকর আচরণ সম্পর্কে জানার জন্য বিজ্ঞানীরা মানুষের যোনি এবং ইঁদুরের ওপর এই গবেষণা চালিয়েছেন। তারা দেখেছেন, বিশেষ একটি ব্যাকটেরিয়া - ফুসোব্যাকটেরিয়াম নিউক্লিয়েটাম - বিভি'র সাথে সম্পর্কিত ব্যাকটেরিয়াগুলোর বংশবৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এই গবেষণার সাথে জড়িত ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. অ্যামান্ডা লুইস এবং তার সহকর্মীরা জানাচ্ছেন, ওরাল সেক্স থেকে কোন কোন সময় নারীর যোনিতে ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস হতে পারে, এই গবেষণা থেকে সেই প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। দুটি নারীর মধ্যে লেসবিয়ান সম্পর্কসহ বিভিন্ন ধরনের যৌন সঙ্গমের ফলে বিভি হতে পারে - একথা বিশেষজ্ঞদের অজানা নয়। ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সেক্সসুয়াল হেলথ-এর মুখপাত্র অধ্যাপক ক্লডিয়া এস্টকোর্ট বলছেন, এই গবেষণার মধ্য দিয়ে ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের ধারণা আরও পরিষ্কার হবে। অন্য কোন সমস্যা থাকুক বা না থাকুক, ওরাল সেক্সের মাধ্যমে যৌনরোগের জীবাণু এবং নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া স্ত্রী অঙ্গে প্রবেশ করতে পারে। ওরাল সেক্সের মাধ্যমে নারী যৌনাঙ্গে সংক্রমণ ঘটে 'ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস' বা 'বিভি' নামে রোগ হতে পারে বলে এক গবেষণায় জানা যাচ্ছে। +text: বাংলাদেশে কোরবানির সময় চামড়ার চাহিদার ষাট শতাংশ পূরণ হয়ে থাকে মোঃ আমিন বলছেন, ''ওনারা যে রেটে দর দিয়েছেন, তাতে তো কিছু কেনাও যায় না, বিক্রিও করা যায় না। একেকটা চামড়ার দাম পড়ে পাঁচশো টাকা-ছয়শ টাকা। বড় চামড়া হলে সর্বোচ্চ একহাজার টাকা হয়।'' ''কিন্তু একজন শ্রমিকের বেতনই আছে একহাজার টাকা। তার সঙ্গে লবণ আছে, পরিবহন খরচ আছে। এতো খাটাখাটি করে আমাদেরও কিছু লাভ করতে হয়। এরপরে আর কিছু তো থাকেই না, বরং লোকসান হয়ে যাচ্ছে।'' সামনের বছর আর চামড়ার ব্যবসা করবেন কিনা, এখন সেটি নিয়েও তিনি ভাবতে শুরু করেছেন। একই কথা বলছেন বরিশাল, রাজশাহী, চট্টগ্রা��ের খুচরা ব্যবসায়ীরাও। বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারেন: চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধ: আপনার কি কিছু এসে যায়? যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে চীনের চার অস্ত্র বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩০ কোটি বর্গফুট চামড়ার ব্যবসা হয়ে থাকে কেন কমছে চামড়ার দর? বাংলাদেশে মোট চামড়ার চাহিদার ষাট শতাংশই কোরবানির ঈদের সময় সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে কোরবানির পর এখন চলছে কাঁচা চামড়া সংগ্রহের প্রক্রিয়া, তবে এ বছর কাঁচা চামড়ার দাম সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে বলে বলছেন ব্যবসায়ীরা। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, কেনা দরও না পাওয়ায় তারা বড় ধরণের আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। গত কয়েক বছর ধরেই কাঁচা চামড়ার দাম কমতির দিকে রয়েছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ২০১৪ সালেও প্রতি বর্গফুট লবণ দেয়া চামড়া বিক্রি হয়েছে সরকার নির্ধারিত ৭৫ টাকা দরে, যা এ বছর এসে দাঁড়িয়েছে ৪৫টাকা দরে। লবণ ছাড়া চামড়ার দর ৩০/৩৫টাকা। অর্থাৎ তখনকার গরুর একটি দুই হাজার টাকা দামের কাঁচা চামড়া এখন তাদের বিক্রি করতে হচ্ছে প্রায় অর্ধেক মূল্যে, ঢাকার বাইরে দর আরো কম। খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ট্যানারি মালিকরা সিন্ডিকেট করে কম দামে চামড়া কিনছেন। আর তাদের চাপে সরকার চামড়ার কম দাম ধরতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ দায়ী করছে বিশ্ব অর্থনীতিকে। মি. আহমেদ বলছেন, ''কাঁচা চামড়ার দাম কমার কয়েকটি কারণ রয়েছে। চামড়ার দামের বেঞ্চ মার্ক হচ্ছে আমেরিকা। সেখানে যদি দাম কমে, তাহলে সারা বিশ্বেই দাম কমে। এ কারণে আমাদের দেশেও গত দুইবছর ধরে চামড়ার দাম কমার দিকে রয়েছে। '' তিনি বলছেন, ''আরেকটি কারণ হলো, চামড়াটা আমাদের দেশ থেকে চীনের ক্রেতারা কিনে নিয়ে পণ্য বানিয়ে আবার যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি করে। কিন্তু চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে আমেরিকা চীনের পণ্যের ওপর যে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, সেটার প্রভাব বাংলাদেশের চামড়া শিল্পেরও ওপর পড়েছে।'' ''কমপ্লায়েন্স ইস্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন গত দুইবছর ধরে আমাদের কাছ থেকে চামড়া কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। এ কারণে আমাদের দেশের চামড়ার যে চাহিদা ছিল বিদেশের বাজারে, সেই চাহিদা দিন দিন কমছে,'' বলছেন মি. আহমেদ। বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৩০ কোটি বর্গফুট চামড়া সংগ্রহ করা হয়। ���ার মধ্যে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মাত্র পৌনে তিনকোটি, বাকিটা রপ্তানি হয়। বিশ্ববাজারে মন্দার কারণে বাংলাদেশের চামড়ার দাম কমছে বলে বলছেন ব্যবসায়ীরা সমাধানের পথ কী? বিশ্লেষকরা বলছেন, মানুষের আর্থিক ক্ষমতা বাড়ায় পশু কোরবানির সংখ্যা যেমন বাড়ছে, কিন্তু সেই অনুপাতে চামড়া সংগ্রহ ব্যবস্থা পাল্টায় নি, আর মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রেও রয়েছে নানা অব্যবস্থাপনা। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলছেন, চামড়ার যে দাম কমেছে, মূল্যস্ফীতি বিবেচনা করলে সেই পতন আসলে আরো বেশি হবে। চামড়া মালিকদের কাছে আগের স্টক থাকা, বৈশ্বিক দর পতন, রপ্তানির শ্লথগতি - নানা কারণ রয়েছে। তিনি বলছেন, সেজন্য আধা-প্রক্রিয়াজাত চামড়ার যে বাজারগুলো বিশ্বে রয়েছে, সেদিকে আমাদের নজর দেয়া দরকার। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বাজার তৈরির দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। ''এখন যে প্রক্রিয়ায় চামড়ার দর নির্ধারণ করা হয়, তাতে একটি বিশেষ গোষ্ঠীর সুবিধার বিষয়টা বিবেচনায় রাখা হয়। কিন্তু তাতে তারা সাময়িক লাভবান হলেও আসলে বেশি লাভ হয় না। কারণ সাধারণ ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চামড়া সংগ্রহের কোন চেইন গড়ে ওঠে না। তাই চামড়ার মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে পুরো সাপ্লাই চেইনের বিষয়টি বিবেচনায় রাখা উচিত।'' ''মনে রাখা দরকার, চামড়ার একটি সক্রিয় বাজার-সেটা দেশে হোক আর বিদেশে, তা যতটা সচল থাকবে, তখন এর সংগ্রহ, মূল্য বা ব্যবহারে সব পক্ষ লাভবান হবে।'' বুধবার থেকে এ বছর কোরবানির চামড়া সংগ্রহ শুরু হলেও এখনো অনেক খুচরা ব্যবসায়ী তাদের সংগ্রহ করা চামড়া বিক্রি করতে পারেননি। বিশেষ করে ঢাকার বাইরের এলাকা থেকে এখনো মূল চামড়া বাজার পোস্তা এবং সাভারের উদ্দেশ্যে চামড়া আসছে। কিন্তু ঢাকা, বরিশাল, রাজশাহী, চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকার এবং কারখানা মালিকরা যে দাম বলছেন, তাতে তাদের শ্রমিক মজুরীও উঠবে না। ফলে সীমান্ত পথে কাঁচা চামড়া পাচার হয়ে যাওয়ার আশংকাও করছেন অনেকে। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: আমেরিকা থেকে মেক্সিকো 'মাদক পাচার সুড়ঙ্গ' মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক আদালতে দাঁড় করানোর আহ্বান আমিরাতের বিপুল অর্থ সাহায্য ফিরিয়ে দিচ্ছে দিল্লি ফরিদপুরের ব্যবসায়ী মোঃ. আমিন পনেরো বছর ধরে কাঁচা চামড়ার ব্যবসা করছেন। কিন্তু এ বছরের মতো এতটা ক্ষতি আর আর আগে হয়নি। কেনা দামও না পাওয়া তিনি এখনো অনেক চামড়া বিক্রি করতে পারছেন না। +text: বরেপেটার বাসিন্দা শুকুর আলী এই চারজনের দুজন মুসলিম এবং দুজন হিন্দু। তাদের নিজেদের মুখেই শুনুন সে কথা - শুকুর আলী, বরপেটা জেলার বাসিন্দা প্রথমবার যখন এনআরসি হয়েছিল আসামে, তখন আমার বয়স ছিল দুই বছর। এবারের এনআরসি-তে নাম তোলার জন্য যখন লিগ্যাসি ডেটা বার করা হল, সেখানে দেখা গেল যে আমার নাম সেই প্রথম এনআরসিতে উঠেছিল। সেটা কত সাল বলতে পারব না, কিন্তু আমার যে দুই বছর বয়স ছিল তখন, সেটা তো সরকারি কাগজেই প্রমাণ। তবুও এবারের এনআরসি-তে আমার নাম নেই। শুধু আমার না, ছেলে, নাতি-নাতনী কারোরই নাম নেই। তবে স্ত্রী আর দুই পুত্রবধূর নাম তালিকায় এসেছে। খসড়া বেরনোর পরে চার বার আমাকে শুনানিতে ডাকা হয়েছিল ৫০ কিলোমিটার দূরের একটা শিবিরে। সেখানে অতবার গিয়েও নাম তুলতে পারলাম না! এখন সবাই বলছে যে মামলা কর। কিন্তু তাতে তো পয়সা লাগবে! কোথায় পাব আমি অত পয়সা? আমার কি হাইকোর্ট - সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সামর্থ্য আছে? মরে না যাওয়া ছাড়া তো আর কোনও উপায় দেখি না! গুড়েশ্বরের রাণী পালের আদিবাস বিহারে। রাণী পাল, গুড়েশ্বর, বাকসা জেলা, আমি ৬৫ সালে যে ভোট দিয়েছিলাম, সেই নথি জমা দিয়েছিলাম, তা সত্ত্বেও আমার নাম ওঠে নি এনআরসি-তে। কেন যে উঠল না সেটা এখনও বুঝতে পারছি না। আমার জন্ম এখানে হলেও আমাদের পরিবার আদতে বিহারের বাসিন্দা। আমাকে কীভাবে বাংলাদেশী মনে করতে পারে, সে তো বুঝতে পারলাম না। বাপন মল্লিক, হাজলপাড়া, বাকসা জেলা আমার ঠাকুরদা নীহার রঞ্জন মল্লিক আদতে ময়মনসিংহের বাসিন্দা ছিলেন। ১৯৬৪ সালের পয়লা জুলাই তিনি পরিবার সহ সীমানা পার করে ভারতে আসেন। পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারের গীতলদহ সীমানা চৌকি দিয়ে ভারতে এসে তিনি জলপাইগুড়ি জেলায় থাকতেন প্রথমে। তারপরে তিনি আসামে আসেন। হাজলপাড়ার বাপন মল্লিক বিবিসির সংবাদদাতার কাছে তার ঠাকুরদার মাইগ্রেশন সার্টিফিকেট দেখাচ্ছেন সেই 'মাইগ্রেশন সার্টিফিকেট' জমা দিয়েছিলাম আমরা এটা প্রমাণ করতে যে ৭১-এর আগেই আমার পূর্বপুরুষ ভারতে বসবাস করতেন। ওই সার্টিফিকেটে আমার বাবা সহ পরিবারের যতজন এসেছিলেন ভারতে, সকলের নাম রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমাদের পরিবারের সাতজন সদস্যের কারও নামই এনআরসি তে উঠল না। অফিসাররা শুনানির সময়ে বলেছিলেন যে আমার টেনশনের কোনও কারণ নেই। আসল নথি আছে, তাই আমাদের নাম এসে যাবে। তবে তালিকা বেরনোর পরে তো দেখছি নাম নেই। আমাদের এলাকার মোটামুটি ৭০ শতাংশ মানুষেরই নাম ওঠে নি । বাঙালিরা যাতে আসামে না থাকতে পারে, সেজন্যই চক্রান্ত হচ্ছে। যা ভোগান্তি হচ্ছে বাঙালিদের, যে অত্যাচার হচ্ছে, তার থেকে সরকার বলেই দিক যে বাঙালিরা আসামে থাকতে পারবে না! আমরা না হয় চলে যাব। অথবা মেরে ফেল আমাদের। মানুষ নাওয়া খাওয়া ভুলে চিন্তায় পাগল হয়ে যাচ্ছে এর পর কী হবে, সেটা ভেবে! মুকাদ্দেস আলির নাম উঠেছে। ওঠেনি তার স্ত্রী (ডানে) ও ছেলেমেয়েদের মুকাদ্দেস আলি, বরপেটার বাসিন্দা আমার নাম ঘটনাচক্রে এনআরসি-তে এসেছে, কিন্তু আমার স্ত্রী বা ছেলে-মেয়ে কারও নাম ওঠে নি। কতো বড় অবাক কাণ্ড ভাবুন। আমি যদি ভারতীয় হই, তাহলে আমার ছেলে মেয়েরা কি বাংলাদেশী হবে? আমার স্ত্রীর নামও নেই। তার জন্ম এখানেই, তার গোটা পরিবার এদেশেরই, কিন্তু তাকেও কী তাহলে এখন বিদেশী বলা হবে? কেমন করে আমাদের পরিবারকে বিদেশী বানাবে? গতবছরের খসড়া তালিকায় আমার নামও ছিল না। তারপরে সকলের নামেই নোটিস এল যখন, তখন বার বার শুনানিতে গেছি। বহু দূরে দূরে যেতে হয়েছে গাড়ি ভাড়া করে। সুদে দশ হাজার টাকা ধার করে নথি যোগাড় আর শুনানির জন্য গাড়ি ভাড়া করেছি আমরা। এত করেও নাম তুলতে পারলাম না । এখন যে কী করব, জানি না। সরকার নাকি বলছে কোর্টে যেতে হবে। এমনিতেই এত টাকা ধার কর্জ হয়ে গেছে, এরপরে আবারও মামলা লড়তে হলে তো আমরা সর্বস্বান্ত হয়ে যাব! আমাদের ক্ষমতা আছে নাকি হাইকোর্ট সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার! চূড়ান্ত নাগরিকত্বের তালিকায় নিজের বা ঘনিষ্ঠ স্বজনদের নাম না ওঠায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভারতের আসামের যে ১৯ লাখ হতভাগ্য মানুষ, তাদের মধ্যে চারজন বিবিসির কাছে তাদের ক্ষোভ এবং হতাশার কথা বলেছেন। +text: বিটিআরসির বক্তব্য, পৃথিবীর মধ্যে 'অলমোস্ট সর্বনিম্ন' কলরেট রয়েছে বাংলাদেশে। এই কলরেট বাড়ানোর একটি উদ্দেশ্য নিয়ে আজ (বুধবার) মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি সভা করবে বলে জানা যাচ্ছে। কিন্তু বিটিআরসি কেন কলরেট বাড়ানোর জন্য উদ্যোগী? এই প্রশ্নে বিবিসিকে সংস্থাটির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের কলরেট পৃথিবীর মধ্যে প্রায় সর্বনিম্ন। এত সস্তায় কেউ কথা বলতে পারেনা আর কোথাও। "কিন্তু সেটা আমাদের যুক্���ি না। কারণটা হচ্ছে, এখানে অননেট এবং অফনেট বলে একটা জিনিস আছে। আপনি যদি একই নেটওয়ার্কের ভেতরে কথা বলেন, সেটা হচ্ছে অননেট। আর এক নেটওয়ার্ক থেকে আরেক নেটওয়ার্কে কথা বলতে গেলে সেটা হল অফনেট। এটার জন্য আমাদের দুটো ভিন্ন রেট আছে। এটা অনেক ডিফারেন্স। অননেটের জন্য সর্বনিম্ন ২৫ পয়সা, অফনেটের জন্য ৬০ পয়সা। পৃথিবীর সব জায়গাতেই এই দুটো রেটের মধ্যে তফাৎ নেই। সেজন্য এই দুটোর মধ্যে পার্থক্য কমানোর জন্য আমরা প্রাথমিকভাবে একটা উদ্যোগ নিচ্ছি", বলছিলেন ড. মাহমুদ। আরো পড়ুন: সৌদি যুবরাজদের কারা অপহরণ করল এবং কেন? শেখ মুজিব হত্যার পর ৩২নং রোডের বাড়ী কেমন ছিল? শেখ মুজিব হত্যার পর জেনারেল জিয়া যে মন্তব্য করেছিলেন কিন্তু কলরেট সর্বনিম্ন হলেও বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, "এখানে মোবাইল ফোনের ব্যবসা অনেক দেশের চাইতেই লাভজনক।" পার্থক্য কমাতে গেলেই সর্বনিম্ন কলরেট ২৫ পয়সা থেকে বেড়ে যাবে বোঝাই যাচ্ছে। অর্থাৎ বেড়ে যাবে গ্রাহক পর্যায়ে মোবাইল ফোনে কথা বলার ব্যয়। সেক্ষেত্রে তো গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে না? এই প্রশ্নে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কিংবা গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির উদাহরণ টেনে বলছেন, "এমনভাবে বাড়াবো যাতে গ্রাহকের উপর সর্বনিম্ন প্রতিক্রিয়া হয়।" কিন্তু টেলিফোন খাত নিয়ে খোঁজখবর রাখেন এমন একজন বিশেষজ্ঞ আবু সাঈদ খান বিবিসিকে বলছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাজ হচ্ছে, মোবাইল অপারেটর এবং গ্রাহকদের স্বার্থ সমানভাবে রক্ষা করা। কিন্তু বিটিআরসি সেটা আজ পর্যন্ত করতে পারেনি। এমনকি সেবার মাণ নিয়ন্ত্রণের জন্য আজ পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ তারা নিতে পেরেছে বলে জানা নেই, বলছেন মি. খান। তিনি আরও বলছেন, তার জানা মতে এই কলরেট বাড়ানোর কোনও দাবী অপারেটরদের তরফ থেকে ওঠেনি, সরকারের তরফ থেকেও সিদ্ধান্ত হয়নি। তাহলে বিটিআরসির কেন আগ্রহী? "এটার মূল কারণ হচ্ছে বিটিআরসি অপারেটরদের কাছ থেকে রাজস্বের একটি অংশ পেয়ে থাকে। রাজস্ব বৃদ্ধিই এর সম্ভাব্য একমাত্র কারণ যেটা বিটিআরসিকে এই উদ্যোগ নিতে উৎসাহিত করেছে", বলছেন আবু সাঈদ খান। বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম সম্প্রতি মোবাইল ফোনের মূল্যহার বা কলরেট কমাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন, কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি উল্টো কলরেট বাড়াতে চাইছে। +text: সজ্জন কুমার ১৯৮৪ সালে ভারতের ��ৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তার শিখ দেহরক্ষীদের হাতে নিহত হওয়ার পর দিল্লিসহ সারা দেশজুড়ে তিন হাজারেরও বেশি শিখকে হত্যা করা হয়েছিল - আর তাতে এই প্রথম অভিযুক্ত কোন বড় মাপের নেতার সাজা হল। দাঙ্গাপীড়িত বিভিন্ন শিখ পরিবারের সদস্যরা বলছেন, প্রায় তিন যুগ পরে হলেও ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের যে অবশেষে সাজা হচ্ছে এটাই তাদের একমাত্র সান্ত্বনা। ১৯৮৪ সালের ৩১শে অক্টোবর ইন্দিরা গান্ধী নিহত হওয়ার মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যেই দিল্লি জুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছিল শিখ-বিরোধী তান্ডব। ১৯৮৪তে দিল্লিতে শিখ-বিরোধী তান্ডবে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বহু যানবাহন, দোকানপাট আর তাতে সিনিয়র কংগ্রেস নেতারা বিভিন্ন মহলায় দাঁড়িয়ে থেকে হত্যাকাণ্ড ও বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ। জাঠ সম্প্রদায়ের প্রভাবশালী নেতা বলে পরিচিত সজ্জন কুমার সে সময় ছিলেন রাজধানীর একজন শাসক-দলীয় এমপি। আর আজ যে মামলায় তার সাজা হল তাতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তিনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে পাঁচ সদস্যের এক শিখ পরিবারকে জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় তদারকি করেছিলেন। নিহতের কন্যা নিরপ্রীত কাউর আদালতে সজ্জন কুমারের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তিনি বলছিলেন, "নিজের বাবাকে যেভাবে আমি জীবন্ত অবস্থায় আগুনে জ্বলতে দেখেছি তারপর কোন ভয়-ভীতিই আমাকে দমাতে পারেনি।" ১৯৮৪ সালের দাঙ্গার বিচারের দাবিতে শিখদের প্রতিবাদ "মরে গেলেও আমি বিচার নিয়েই মরব, এটাই ছিল আমার জেদ।" সজ্জন কুমার এর আগে এই মামলায় নিম্ন আদালতে রেহাই পেয়ে গিয়েছিলেন - দাঙ্গার কুড়ি বছর বাদে ২০০৪ সালে পার্লামেন্টে এমপি হিসেবে নিয়ে এসে তাকে রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসনও করেছিল কংগ্রেস। অকালি দলের নেত্রী ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরসিমরত কাউর সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, "শিখ দাঙ্গার প্রত্যক্ষদর্শীরা যখন তাদের বয়ান পুলিশের কাছে লিপিবদ্ধ করতে গেছেন তখন পুলিশের সাহায্য নিয়ে জগদীশ টাইটলার, সজ্জন কুমারের মতো নেতারা তাদের ভয় দেখিয়েছেন, হুমকি দিয়েছেন।" "আর আজ আদালতও তাদের ঐতিহাসিক রায়ে বলেছে, রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার কারণেই এই অপরাধীরা এতদিন বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াতে পেরেছে।" ইন্দিরা গান্ধী - মৃত্যুর মাত্র দিন কুড়ি আগে দিল্লির ত্রিলোকপুরী, পাঞ্জাবিপুরা, প্রীতমপুরার মতো বি��িন্ন শিখ-অধ্যুষিত মহল্লায় আজ এত বছর পরে কিছুটা সান্ত্বনার পরশ মিলেছে। বৃদ্ধারা সেখানে বর্ণনা করেছেন কীভাবে সেদিনের কংগ্রেস সরকার নারী-শিশু-পুরুষ-বৃদ্ধ নির্বিশেষে হত্যালীলা চালিয়েছিল। প্রবীণরা আবার বলছিলেন, "সেদিন কোন দাঙ্গাই বাঁধেনি - আসলে খোলাখুলি দাঙ্গা করানো হয়েছিল, পুলিশ-প্রশাসন কেউ আমাদের বাঁচাতে আসেনি।" আজকের রায়ের পর এর রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টায় দেরি করেনি বিজেপিও। দাঙ্গায় অভিযুক্তদের ফাঁসিও দাবি করেছে বিভিন্ন শিখ সংগঠন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ১৯৮৪কে দেশের ইতিহাসে 'সবচেয়ে বড় গণহত্যা' বলে দাবি করে বলেছেন, "গত সাড়ে তিন দশক ধরে এই হত্যাকারীদের আড়াল করতে কংগ্রেস কম চেষ্টা করেনি।" "কিন্তু মোদী সরকারের আমলে গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দলের তৎপরতাতেই ন্যায় বিচার এসেছে।" তবে সজ্জন কুমারের যাবজ্জীবন সাজার রায় এই দাঙ্গার বিচারে 'ক্লোজার' এনে দেবে- অতটা এখনই কেউ মনে করছেন না। ভারতে ৩৪ বছর আগেকার ভয়াবহ শিখ-বিরোধী দাঙ্গাতে সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগে দিল্লি হাইকোর্ট আজ বিরোধী দল কংগ্রেসের এক সিনিয়র রাজনীতিবিদ সজ্জন কুমারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। +text: মাঠ ও মাঠের বাইরের নানা ঘটনায় উপভোগ্য ছিল অস্ট্রেলিয়া ভারত টেস্ট সিরিজ ৮৬ শতাংশ ভক্ত টেস্ট ক্রিকেটে দেখা পছন্দ করে বলে জানিয়েছে। সীমিত ওভারের ক্রিকেটের তুলনায় পাচঁ দিনের ক্রিকেটের প্রতি ক্রিকেট ভক্তদের সমর্থন দেখা গিয়েছে। মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের একটি জরিপে পাওয়া গিয়েছে এই তথ্য। এই জরিপের নাম এমসিসি টেস্ট ক্রিকেট সার্ভে। এই গবেষণাধর্মী জরিপের উদ্দেশ্য ছিল টেস্ট ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা ও প্রাসঙ্গিকতা যাচাই করা। মাঠ ও মাঠের বাইরের নানা ঘটনায় উপভোগ্য ছিল অস্ট্রেলিয়া ভারত টেস্ট সিরিজ আরো পড়ুন: যে কারণে খুব অল্প বয়সে খেলা ছাড়েন নারী ফুটবলাররা যে ৪টি কারণে সেরা নারী ফুটবলাররা গ্রাম থেকেই আসছে বাংলাদেশ জাতীয় দলে ঘরোয়া ক্রিকেট তারকাদের সুযোগ কতটা? টেস্ট ক্রিকেট উপভোগ করছেন ইংলিশ সমর্থকরা কীভাবে জরিপ চালানো হয় ১০০ দেশের ১৩ হাজার ক্রিকেট ভক্তের ওপর এই জরিপ চালানো হয়। যেখানে ভক্তরা নিরঙ্কুশভাবে টেস্ট ক্রিকেটের কথা বলেছে। এমসিসির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "আমরা দেখতে চেয়েছি বয়স বা দেশের গন্ডি পেড়িয়ে ক্রিকেটের কোন ফরম্যাট বেশি জনপ��রিয় সেখানে টেস্ট ক্রিকেট অনেক এগিয়ে, আমাদের এই জরিপ বলছে টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।" টেস্ট ক্রিকেটের পরে ভক্তদের পছন্দ ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলো। ভক্তদের মতামতের মধ্যে বড় বিষয় ছিল যে তারা টেস্ট ক্রিকেট দেখতেই পছন্দ করে এবং এটাই সেরা ফরম্যাট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল অবশ্য বলছে যে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটই ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির মূল নিয়ামক। এর আগে অবশ্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল বা আইসিসির একটি জরিপে উঠে এসেছিল ৭০ শতাংশ মানুষ টেস্ট ক্রিকেট পছন্দ করে। গত বছর ১ বিলিয়ন অর্থাৎ একশত কোটি মানুষের ওপর জরিপ চালিয়ে দেখা যায় যে টেস্ট ক্রিকেটই বেশি জনপ্রিয়। ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার টেস্ট সিরিজের একটি দৃশ্য এমসিসির এই জরিপে ভক্তদের কিছু চাওয়া পাওয়া উঠে এসেছে। ক্রিকেটাররা কী বলছেন? শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারা এমসিসির বিশ্ব ক্রিকেট কমিটির একজন সদস্য। সাঙ্গাকারা মোটেও অবাক হননি এই জরিপ দেখে। ইন্ডিয়া অস্ট্রেলিয়াকে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে হারিয়েছে, শ্রীলঙ্কা দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছে শেষ কয়েক মাসে টেস্ট ক্রিকেট সবাই উপভোগ করেছে বলে মনে করেন সাঙ্গাকারা। সাঙ্গাকারা আরো বলেন, "এটা একটা সুযোগ ও দায়িত্ব, যার ফলে অনেক দৃঢ় একটি ভবিষ্যৎ পেতে যাচ্ছে টেস্ট ক্রিকেট। অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কার দুই সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং ও কুমার সাঙ্গাকারা ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইক গ্যাটিং এই এমসিসির বিশ্ব ক্রিকেট কমিটির প্রধান। তিনি মনে করেন টেস্ট ক্রিকেট চিরাচরিত গতির সাথে তাল মিলিয়ে এগোচ্ছে, দিবারাত্রির টেস্টের চাহিদা রয়েছে। প্রশাসনের উচিৎ এসব সুযোগ কাজে লাগানো। "বিরাট কোহলি, ফ্যাফ ডু প্লেসির মতো বড় তারকারা টেস্ট ক্রিকেট নিষ্ঠার সাথে খেলছেন এটা বড় ব্যাপার এটাই ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সম্মান।" বিবিসি বাংলার আরো কিছু খবর: আরো দুই আইএস জিহাদি বধূর নাগরিকত্ব বাতিল ইথিওপিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, 'বেঁচে নেই কেউ' ভারত পাকিস্তানের টিভি স্টুডিওতে যেভাবে যুদ্ধ হলো মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব বা এমসিসি নামে পরিচিত ক্রিকেটের শীর্ষ একটি প্যানেল ঘোষণা করেছে এখনো টেস্ট ক্রিকেটই জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছে। +text: উত্তেজক পারফরম্যান্সের জ���্য পরিচিত নিকি মিনাজ। নারী ও এলজিবিটি গোষ্ঠীর অধিকারের সমর্থনে জেদ্দায় তার ওই কনসার্টে অংশ নেয়ার কথা ছিলো। কিন্তু ওই কনসার্টকে নিয়ে তীব্র আলোচনা সমালোচনা তৈরি হয়েছিলো। এছাড়া চরম রক্ষণশীল সৌদি সমাজে নিকি মিনাজের পোশাক ও গানের ভাষা কিভাবে নেয় - তা নিয়েও প্রশ্ন ছিলো। সৌদি আরব সাম্প্রতিক সময়ে বিনোদনমূলক নানা বিষয়ের ওপর বাধা-নিষেধ সহজ করে আনার চেষ্টা করছে। গত অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সাংবাদিক জামাল খাসোগজী হত্যাকাণ্ডের পর সৌদি আরবে মানবাধিকার রেকর্ড নিয়ে সমালোচনা আরও জোরদার হয়। সৌদি আরবে নিকি মিনাজের কনসার্ট নিয়ে বিস্ময় স্পেনের মতো 'ষাঁড় দৌড়' উৎসব করতে চায় সৌদি আরব সিনেমা, বিনোদনে শত শত কোটি ডলার ঢালছে সৌদি খোলামেলা পোশাক এবং যৌন বক্তব্য সংবলিত গানের কারণে নিকি মিনাজের বিশেষভাবে পরিচিত রয়েছে এরপর এই মার্চে আবারো দেশটি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে দশজন নারী অধিকার কর্মীকে বিচারের মুখোমুখি করার পর। এখন নিজের কনসার্ট বাতিল করে দেয়া এক বিবৃতিতে নিকি মিনাজ বলছেন, "সতর্ক পর্যবেক্ষণের পর জেদ্দা ওয়ার্ল্ড ফেস্টে আমার নির্ধারিত কনসার্ট নিয়ে এগিয়ে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি।" এর আগে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন নিকি মিনাজের কাছে লেখা এক খোলা চিঠিতে ১৮ই জুলাইয়ের ওই ফেস্টিভ্যাল থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার অনুরোধ জানায়। তারা 'রাজতন্ত্রের অর্থ প্রত্যাখ্যান' করে নিজের প্রভাব আটক নারী অধিকার কর্মীদের জন্য ব্যবহারের পরামর্শ দেন তাকে। তবে নিকি মিনাজই সৌদি আরবের আমন্ত্রণ পেয়ে বিতর্ক তৈরি করার প্রথম শিল্পী নন। এ বছরের শুরুতেই মারিয়া ক্যারি তার অনুষ্ঠান বাতিল করতে মানবাধিকার কর্মীদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। সৌদি আরবের সংগীত উৎসবে শেষ পর্যন্ত অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করেছেন র‍্যাপার নিকি মিনাজ। +text: ভিকারুননিসা স্কুলের ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনার প্রতিবাদে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা স্কুলের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে স্কুলের সামনে জড়ো হয়ে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিবিসি নিউজ বাংলার সংবাদদাতা নাগিব বাহার ঘটনাস্থল থেকে জানাচ্ছেন, সকালে অভিভাবক এবং স্কুলের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে এই ঘটনার বিচার দাবি করেন। তারা দোষীদ��র শাস্তি দাবি করেছেন। এ সময় কিছুক্ষণের জন্য স্কুলের সামনের রাস্তা অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক অভিযোগ করেছেন, ''এর আগেও অভিভাবকদের সঙ্গে নানা কারণ ধরে দুর্ব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে। অরিত্রীর সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, তা অমানবিক এবং এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।'' অভিভাবক-শিক্ষকরা জানিয়েছেন, জাতীয় নির্বাচনের কারণে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে স্কুলের সব পরীক্ষা শেষ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাই স্কুলের পরীক্ষা কার্যক্রম যথারীতি চলেছে। সোমবার ঢাকার শান্তিনগর থেকে অরিত্রী অধিকারী নামে স্কুলের একজন শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আরো পড়ুন: শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা প্রবণতা দূর করবেন কিভাবে? 'নারীর জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থান নিজের ঘর' 'আমার শিক্ষক আমাকে আত্মহত্যা থেকে বাঁচিয়েছেন' জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে লবণাক্ততা ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজ পরিবারের অভিযোগ, রোববার পরীক্ষা চলার সময় অরিত্রীর কাছে মোবাইল ফোন পাওয়ার পর, সে নকল করছে, এমন অভিযোগে সোমবার বাবা-মাকে ডেকে পাঠায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেখানে তাদের অপমান করা হয় বলে অভিযোগ করেন অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী। মেয়েকে ছাড়পত্র নিয়ে যেতেও বলা হয়। এরপর বাড়ি এসে অরিত্রী সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়নায় ফাঁস দেয় বলে জানান মি. অধিকারী। ভিকারুননিসা স্কুলের সামনে শিক্ষার্থী আর অভিভাবকদের বিক্ষোভ তদন্ত কমিটি গঠন সকাল ১১টার দিকে স্কুলে আসেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন। এ ঘটনাকে 'অত্যন্ত হৃদয়বিদারক' বলে বর্ণনা করে তিনি বলেন, ''একজন শিক্ষার্থী কতটা অপমানিত হলে, কতটা কষ্ট পেলে আত্মহত্যার মতো পথ বেছে নেয়? এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, প্রমাণ পাওয়া গেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।'' এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: ঐতিহাসিকভাবেই আত্মহত্যা প্রবণ দেশ জাপান? পরীক্ষায় ভালো করার চাপে কি শিশুরা আত্মঘাতী হচ্ছে? ভারতে ঘণ্টায় কেন একজন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করছে? 'ইভ টিজিং-এর শিকার হয়ে' আড়াই বছরে ৪০ আত্মহত্যা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার ভি��ারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের নবম শ্রেণীর ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনার পর স্কুলের সামনে বিক্ষোভ করেছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। +text: বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা গয়েশ্বের চন্দ্র রায়, নির্বাচনী সিহংসতার শিকার। উনিশশো একানব্বই সাল থেকে যারা সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছেন তাদের অনেকেই বলছেন, এবারের নির্বাচনের প্রচারণার পরিস্থিতি ছিল অনেক দিক থেকে একেবারেই ভিন্ন। প্রথম দিন থেকেই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বলে আসছে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট একতরফা প্রচারণা চালানোর সুযোগ পাচ্ছে। বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় পোস্টার, ব্যানার, কিংবা সনাতনী প্রথায় যেসব প্রচারণা হয় তার সবটাই তারা করতে পারছে। এই খবর রয়েছে গণমাধ্যমে এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষকরাও এই অভিযোগ অস্বীকার করছেন না। এই অভিযোগের প্রশ্নে আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা নূহ-উল-আলম লেনিন বলছিলেন, বিএনপির সাংগঠনিক প্রস্তুতির অভাব । মি. লেনিন বলছিলেন "বিএনপির সাংগঠনিক প্রস্তুতি ছিল না। তারা একটা নেতিবাচক রাজনীতি করছে এবং সেই নেতিবাচকতার ভিত্তিতে তারা যেমন এবারে নির্বাচনে এসেছে সেটাকে যেমন আমরা স্বাগত জানিয়েছি, তাদের নিজেদের দলের মধ্যে যে শৃঙ্খলাবোধ, দলের যে সাংগঠনিক ক্ষমতা সেগুলো তারা অনেকটাই হারিয়ে ফেলেছে। যার ফলে তাদের নেতৃত্ব নেই এবং প্রার্থী-জট হয়েছে।" ড.কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্ট এবং বিএনপির নেতারা প্রথম থেকেই তাদের ওপর হামলা, গ্রেপ্তারের অভিযোগ করছেন। ঢাকায় সরকারদলীয় একজন প্রার্থীর গণসংযোগ। আরো পড়তে পারেন: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখে বাংলাদেশের নির্বাচন কেন নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সংখ্যা এত কম? ঢাকার আসনে ভোট ছেড়ে দিলেন এরশাদ এবারে ডজন খানেক প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতার ঘটনা বাংলাদেশে নতুন নয়, কিন্তু প্রচারণার সময় খোদ প্রার্থীদের ওপর হামলা প্রচারণার প্রচলিত আমেজকে পাল্টে দিয়েছে। বিএনপি দলের সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা নাকচ করে দিয়েছে। বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলছিলেন, তাদের তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা ঐক্যবদ্ধ আছেন। তারা যেহেতু মূল ধারায় প্রচারণা চালাতে পারেননি তাই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তাদের বার্তা ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন। তিনি বলছিলেন "আমাদের মহাসচিব, আমাদের চেয়ারপার্সনের বিভিন্ন বক্তব্য, ঐক্যফ্রন্টের ড.কামাল হোসেনের বক্তব্যগুলো ইতিমধ্যে আমরা জাতির সামনে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তুলে ধরেছি। বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের লক্ষ্য করে আমরা কিছু কথা বলেছি।" "কেন তাদের ভোট দিতে বলেছি সেটাও বলার চেষ্টা করেছি। সেখানেও অনেক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে, আমাদের বক্তব্যকে বিকৃত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তারপরেও আমরা চেষ্টা করেছি।" বাংলাদেশে নির্বাচনে প্রচারণার শেষ দিন এসে সাধারণত দেখা যায় বড় দলগুলো সর্বশেষ জনসভা করে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দলীয় প্রধানদের ভাষণ দেয়ার উদাহরণ রয়েছে বিগত নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিনে। কিন্তু এবারে এর কোনটিই দেখা যায়নি। ঢাকায় এক প্রার্থীর 'শো-ডাউন'। উনিশশো একানব্বই সাল থেকে যারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছেন তারা বলছেন, এটা একটা নজিরবিহীন প্রচারণা চিত্র । সাবেক নির্বাচন কমিশনার (অব:) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাখাওয়াত হোসেন বলছিলেন, বিগত কয়েকটি নির্বাচনী প্রচারণার সাথে তুলনা করলে এবারে একটা ব্যবস্থাপনাহীন প্রচারণা চলছে। "এবার অব্যবস্থাপনার মধ্যে একটা ক্যাম্পেইন চলছে। এক পার্টি অনেক আগে থেকেই ক্যাম্পেইন শুরু করে দিয়েছে, রুলিং পার্টি। প্রতিপক্ষ পার্টির কিন্তু সেরকম কোন প্রচারণাও দেখা যাচ্ছে না। ক্যাম্পেইন পিরিয়ডে যা হওয়ার কথা না, সে সব হচ্ছে।" "কোড অব কন্ডাক্ট' বলতে যে জিনিসটা আছে সেটা একেবারে অসাড় হয়ে গেছে। সরকারি টিভিতে একটা প্রোগ্রাম করে যে যার বক্তব্য তুলে ধরতো । ২০০৮ সালে এটা হয়েছে। সেই বক্তব্য কিন্তু এবারে দেখছি না। কাজেই সব মিলিয়ে একটা অস্বাভাবিক ক্যাম্পেইন পিরিয়ড আমরা দেখলাম।" তবে অন্য যেকোন বারের তুলনায় এবার নির্বাচনী প্রচারণায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমকে বেশি ব্যবহার করেছে রাজনৈতিক দলগুলো। বৃহস্পতিবার শেষ দিনে চারটি জেলায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভানেত্রী জনসভায় যোগ দিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়েছেন। এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে ৩০শে ডিসেম্বর ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শেষ হচ্ছে শুক্রবার সকাল আটটায়। +text: বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকি কাজে অনিয়ম দুর্নীতি এবং র��জনৈতিক হস্তক্ষেপ ও ব্যবসায়িক প্রভাবের কারণে খেলাপি ঋণের পরিমাণ উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে বলে টিআইবি বলেছে। সংস্থাটি বলেছে, দেশের এখন সাতজন শীর্ষ গ্রহীতা ঋণ খেলাপি হলে ৩৫টি ব্যাংক এবং ১০ জন খেলাপি হলে ৩৭টি ব্যাংক মূলধন সংকটে পড়বে। টিআইবি'র গবেষণা অনুযায়ী, হাতেগোনা কয়েকজনের কাছেই রয়েছে বড় অংকের ঋণের টাকা। একক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন নামে কৌশলে বা যোগসাজশে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েছে। সংস্থাটির গবেষণায় পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক হিসাবে বর্ননা করে এজন্য সিণ্ডিকেট, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, ব্যবসায়িক প্রভাব এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকি কাজে অনিয়ম-দুর্নীতিকে অন্যতম কারণ হিসাবে তুলে ধরেছে। সংস্থাটি বলেছে, ব্যাংকিং খাতে অস্থিরতা, নৈরাজ্য, ঋণ জালিয়াতি এবং খেলাপি ঋণের উচ্চহার চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বা টিআইবি গত ১০ বছরে খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যাংকিং খাতের তদারকি নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে মঙ্গলবার। গবেষণায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সুশাসনের চ্যালেঞ্জ এবং উত্তরণের উপায় নিয়েও ১০দফা সুপারিশ করা হয়েছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধির পরিস্থিতির পিছনে আইনের দূর্বলতাগুলোকেও গবেষণায় চিহ্নিত করা হয়েছে। একক ব্যক্তি বা গ্রুপ কোন একটি ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ কী পরিমাণ অর্থ ঋণ নিতে পারবে- তা ঋণ সীমা নীতিমালায় বলা আছে। কিন্তু একক ব্যক্তি বা গ্রুপ একাধিক ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ কী পরিমাণ ঋণ নিতে পারবে - সেটা আইনে না থাকায় মোটা অংকের ঋণ নিয়ে খেলাপী হওয়ার বিষয়টি এসেছে গবেষণায়। সংস্থাটি বলেছে, যারা রাজনৈতিক বিবেচনায় একটা টোকেন অর্থ ফেরত দিয়ে ঋণ পুন:তফসিলীকরণ করার পর পুনরায় ঋণ খেলাপি হয়েছে তাদের নামও প্রকাশ করা হয়নি। সর্বশেষ গত বছরের মে মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার আলোকে খেলাপি ঋণের মাত্র দুই শতাংশ ফেরত দিয়ে ঋণ পুন:তফসিলীকরণের সুযোগ দেয়া হয়েছিল ১০ বছরের জন্য। এরপর খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে দেখানো হয়েছিল। এ ধরণের পদক্ষেপ ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি হওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম একটি কারণ বলে গবেষণায় বলা হয়েছে। নির্বাচনের সময় টোকেন অর্থ ফেরত দিয়ে প্রার্থী হিসাবে বৈধ হওয়ারও সুযোগ দেয়া হয়। আরও পড়তে পারেন: ব্যাংক থেকে হরদম ঋণ নিচ্ছে সরকার - কেন? ব্যাংক বন্ধ হলে জমা টাকা ফেরত পাওয়া যাবে? তবে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধির পিছনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, ব্যবসায়িক প্রভাব এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের জবাবদিহিতার ঘাটতি ও তদারকিতে অনিয়ম দুর্নীতিকে বড় কারণ হিসাবে উঠে এসেছে টিআইবি'র গবেষণায়। সেখানে আইনের সীমাবদ্ধতার কথাও এসেছে। সংস্থাটি বলেছে, একটি ব্যবসায়িক গোষ্ঠী রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে ব্যাংকিং খাতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। এরপর এই শক্তি তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী নিয়মনীতি উপেক্ষা করে সিণ্ডিকেট তৈরি করে এবং মোটা অংকের ঋণ নিয়ে থাকে। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সমর্থক ব্যবসায়ী অংশ প্রভাব খাটিয়ে আইন পরিবর্তন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত গ্রহণে ও বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করছে। টিআইবি গবেষণায় এমন চিত্র পেয়েছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাত নিয়ন্ত্রণ এবং তদারকির জন্য আইনী কাঠামোতে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। টিআইবি তাদের গবেষণায় ব্যাংকিং খাতে সঙস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন ব্যাংকিং কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংককে নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির পুরো ক্ষমতা দেয়াসহ মোট ছয়টি সুপারিশ করেছে টিআইবি। টিআইবি'র নির্বাহী পরিচালক ড: ইফতেখারুজ্জামান বলছেন, "ব্যাংকিং খাত খাদের কিনারে চলে এসেছে।" তিনি জানিয়েছেন, "সরকারি হিসাব এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে হিসাবে দেখা যাচ্ছে তিন লক্ষ কোটি টাকার মতো ঋণ খেলাপি হয়েছে। এটি বিশাল অংক। ব্যাংকিং খাতে এখনই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া না হলে এই বোঝা জনগণের ওপরই পড়বে।" তবে সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী এম. এ. মান্নান এই বক্তব্য মানতে রাজি নন। তিনি বলেছেন, "খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমে এসেছে। সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। সমস্যাটা আছে। কিন্তু খাদের কিনারে চলে গেছে- এমন কথা ঠিক নয়। সমস্যা আছে, কিন্তু ভয়াবহ পরিস্থিতি নয়।" টিআইবি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ করেছে। তবে ব্যর্থতার অভিযোগ মানতে রাজি নন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো: সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, "আমার কাছে পরিসংখ্যান যা বলছে, তাতে ঋণের ক্ল্যাসিফিকেশন কমেছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক আইনের কাঠামোর মধ্যে থেকে এবং যে জনবল আছে, তা দিয়ে যে দায়িত্ব পালন করার কথা, সেটা বাংলাদেশ ব্যাংক যথাযথভাবে করছে। তার প্রমা�� ঋণের ক্ল্যাসিফিকেশন কমেছে।" বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: সৌদি বিমান টিকেটের জন্য ঢাকায় এয়ারলাইন্স অফিসের সামনে বিক্ষোভ অনাগত সন্তান ছেলে কিনা দেখতে 'অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর পেট কাটল' স্বামী বাংলাদেশে এক দশকের প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৯৫০০ কোটি টাকা ঋণ খেলাপি হয়েছে। দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা টিআইবি'র এক গবেষণায় এই তথ্য জানানো হয়েছে। +text: দক্ষিণ চীন সাগরে প্রবাল প্রাচীরের ওপর চীন অনেক কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করেছে। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে যে ঐ অঞ্চলে নির্মিত কৃত্রিম দ্বীপগুলোতে যদি চীনকে যেতে বাধা দেয়া হয় তাহলে তা "ভয়ংকর সংঘাতে' রূপ নেবে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের মনোনীত যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনের হুমকির জবাবে চীনে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত পত্রিকাগুলোতে আজ এই পাল্টা হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। রেক্স টিলারসন বলেছিলেন, দক্ষিণ চীন সাগরের বিতর্কিত এলাকায় চীন যেসব কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত সেখানে তাদের যাওয়ার পথ বন্ধ করে দেয়া। চীনের অন্তত দুটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে রেক্স টিলারসনের এই কথার তীব্র সমালোচনা করা হয়। কমিউনিষ্ট পার্টি নিয়ন্ত্রিত কট্টরপন্থী পত্রিকা 'গ্লোবাল টাইমস' বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি এরকম কিছু করে তাতে 'বড় আকারে যুদ্ধ' শুরু হয়ে যাবে। দক্ষিণ চীন সাগরের প্রবাল প্রাচীরের ওপর চীন অনেক দিন ধরেই এক গুচ্ছ কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করছে। তবে সাগরের ঐ অঞ্চলকে আরও অনেক দেশ নিজেদের বলে দাবি করছে। কৃত্রিম দ্বীপগুলিতে চীন সামরিক স্থাপনা তৈরি করছে বলে স্যাটেলাইটে তোলা ছবি থেকে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। রেক্স টিলারসন মার্কিন সেনেটে তার শুনানিতে বলেছিলেন, চীন দক্ষিণ চীন সাগরে যা করছে তা রাশিয়া যেভাবে ক্রাইমিয়াকে দখল করে গ্রাস করেছে, অনেকটা সেরকমেরই একটা কাজ। তিনি বলেছিলেন, "চীনকে একটা শক্ত সংকেত পাঠাতে হবে যাতে তারা এরকম কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি বন্ধ করে। আর দ্বিতীয়ত এসব দ্বীপে তাদের ঢুকতে দেয়া উচিত হবে না।" চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র অবশ্য এর জবাবে শুধু এটুকুই বলেছিলেন যে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনেরই সীমানা এবং সেখানে স্বাভাবিক তৎপরতা চালানোর অধিকার তাদের আছে। যুদ্ধের আশংকা কিন্তু চায়না ডেইলি এবং গ্লোবাল টাইমসে প্রকাশিত সম্প���দকীয়ের ভাষা ছিল অনেক বেশি আক্রমণাত্মক। চায়না ডেইলি বলেছে, মিস্টার টিলারসন যে 'চীন-মার্কিন' সম্পর্ক এবং কূটনীতি সম্পর্কে কতটা অজ্ঞ, সেটা প্রমাণ করে তাঁর এই মন্তব্য। "যদি তিনি বাস্তবেই এরকম কোন পদক্ষেপ নেন, সেটা হবে একটা বিপর্যয়। এর ফলে চীন আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মারাত্মক সংঘাত শুরু হবে বলে পর্যবেক্ষকরা আশংকা করছেন। আর যুক্তরাষ্ট্র কিভাবে আশা করে যে চীনকে তাদের বৈধ সীমানায় ঢুকতে বাধা দিলে চীন নিজেকে রক্ষায় কোন পদক্ষেপ নেবে না।" কৃত্রিম দ্বীপগুলিতে চীন সামরিক ঘাঁটি তৈরি করছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে আর গ্লোবাল টাইমস বলেছে, মিস্টার টিলারসন আসলে পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে নিজের নিয়োগ নিশ্চিত করতে আর সেনেটরদের সুনজরে আসতে এরকম মন্তব্য করেছেন। "ওয়াশিংটন যদি না দক্ষিণ চীন সাগরে বড় আকারে একটি যুদ্ধের পরিকল্পনা করে, অন্য কোন উপায়ে সেখানে নির্মিত দ্বীপগুলিতে চীনের প্রবেশ ঠেকানোর চেষ্টা হবে একটা বোকামি।" ওবামা প্রশাসনও অতীতে দক্ষিণ চীন সাগের কৃত্রিম দ্বীপ তৈরির বিরুদ্ধে চীনকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে। ঐ অঞ্চলের সমূদ্রপথ ব্যবহারের অধিকার যে তাদের আছে, সেটা প্রমাণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সেখানে যুদ্ধজাহাজও পাঠিয়েছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ওবামা কখনো এসব দ্বীপে চীনকে ঢুকতে দেয়া হবে না, এমন কথা বলেননি। চায়না ডেইলি বলেছে, মিস্টার টিলারসন যেসব কথাবার্তা বলেছেন, তার কতটা তাদের চীন নীতিতে প্রতিফলিত হয়, সেটা দেখতে হবে। দক্ষিণ চীন সাগরে প্রভাব বিস্তার নিয়ে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সংঘাতের আশংকা তৈরি হয়েছে । +text: হুয়াওয়ে পশ্চিমা কোম্পানীগুলোর জন্য ব্যবসায়ীক চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশের কাছে ফাইভ জি পার্টনার হিসেবে হুয়াওয়ে বেশ পছন্দ। এশিয়ার অনেক দেশে হুয়াওয়ের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক আছে। হুয়াওয়ের সাথে সম্পর্ক ছেদ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের অনেক মিত্র দেশের উপর চাপ প্রয়োগ করছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, হুয়াওয়ে টেলিকম কোম্পানিটি চীন সরকারের জন্য গুপ্তচরবৃত্তি করছে। যদিও তারা এ অভিযোগ ক্রমাগত অস্বীকার করে যাচ্ছে। মার্কিন বিচার বিভাগও হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। তাদের অভিযোগ হচ্ছে, হুয়াওয়ে আমেরিকার বাণিজ্যিক গোপনীয়তা চুরি করেছে এবং যুক্��রাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইরানের সাথে ব্যবসা করছে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এসব অভিযোগ আমলে নিচ্ছে না এশিয়ার দেশগুলো। ফিলিপিন্স, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ডে ফাইভ জি-সহ টেলিকম যন্ত্রপাতি আসে হুয়াওয়ের কাছ থেকে। আরো পড়ুন: চীনা কোম্পানি হুয়াওয়ে নিয়ে কেন এত সন্দেহ হুয়াওয়ে মোবাইল কোম্পানির বিরুদ্ধে আপত্তি কেন? চাকরির এই পরীক্ষায় পাশ করবেন তো? এশিয়ার অনেক দেশে হুয়াওয়ে জনপ্রিয়। টেলিকম শিল্পের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হুয়াওয়ে যে দামে যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে এবং তাদের যে প্রযুক্তিগত দক্ষতা রয়েছে , সেটি অন্যদের নেই। এছাড়া কম্বোডিয়ার মতো দেশে, যেখানে ফোর জি আছে, সেখানেও হুয়াওয়ের কাছ থেকে প্রযুক্তিগত সহায়তা নেয়া হয়। অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটিজিক পলিসি ইন্সটিটিউট-এর টম উরেন বলেন, নিরাপদ এবং শক্তিশালী ফাইভ জি নেটওয়ার্ক ভবিষ্যৎ অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্যই হুয়াওয়ে নজরদারীর মধ্যে রয়েছে। হুয়াওয়েকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যেসব অভিযোগ করছে সেগুলোর ব্যাপারে মি: উরেন বলেন, চীনের আইন অনুযায়ী সেখানকার কোম্পানিগুলো চীনের গোয়েন্দাদের সহায়তা করতে বাধ্য। "ফাইভ জি নেটওয়ার্কের জন্য সেসব যন্ত্রাংশ দরকার, সেগুলো শুধুই অবকাঠামোর যন্ত্রাংশ হিসেবে ব্যবহার হয়না," বলছিলেন তিনি। এর মাধ্যমে সেই নেটওয়ার্কের সবকিছু দেখা যায়। কে কাকে ফোন করছে? কখন ফোন করছে? কোন জায়গা থেকে ফোন করছে? এবং কোন রুটে ডাটা পাঠানো হচ্ছে - এসব কিছুই দেখা যায়। প্রযুক্তিগত দিক থেকে হুয়াওয়ে তাদের অন্য প্রতিযোগীদের চেয়ে এক বছর এগিয়ে আছে বলে মনে করা হয়। ফিলিপিন্সের গ্লোব টেলিকম তাদের নেটওয়ার্ক অবকাঠামো গড়ে তোলার জন্য ২০১১ সাল থেকে হুয়াওয়ের সাথে কাজ করছে। হুয়াওয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা মাং ওয়ানজুকে গত ডিসেম্বর মাসে কানাডার বিমানবন্দরে আটক করা হয়েছে। সম্প্রতি তারা হুয়াওয়ের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে রাজধানী ম্যানিলায় ফাইভ জি নেটওয়ার্ক চালু করেছে। ফলে আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়া যেভাবে হুয়াওয়েকে নিষিদ্ধ করেছে, সেটি এশিয়ার অনেক দেশের জন্য বাস্তবসম্মত নয়। তাদের জন্য আরেকটি উপায় আছে। সেটি হচ্ছে হুয়াওয়ের বিকল্প আরেকটি কোম্পানি খুঁজে বের করা যারা একই দামে প্রযুক্তি দিতে পারবে। কিন্তু হ���য়াওয়ের চেয়ে কম দামে প্রযুক্তি দেয়া বেশ কঠিন। শুধু টেলিকম নেটওয়ার্ক তৈরি করে দেয়াই নয়, সেটি তৈরির পর যে রক্ষণাবেক্ষণ দরকার সেজন্যও হুয়াওয়ে বেশ কার্যকরী। কারণ তারা এ বিষয়ে গুরুত্ব দেয়। সাধারণত পশ্চিমা কোম্পানিগুলো এ বিষয়ে খুব একটা নজর দেয় না। কিন্তু তারপরেও হুয়াওয়েকে নিয়ে এশিয়ার কিছু দেশে উদ্বেগ বাড়ছে। কোন কোন দেশ এরই মধ্যে হুয়াওয়ে নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো চিন্তা-ভাবনা করছে। অনেকে বোঝার চেষ্টা করছে যে হুয়াওয়ে আসলে কতটা ক্ষতিকর হতে পারে। চীন সরকারের সাথে হুয়াওয়ের সম্পর্ক কোন ঝুঁকির কারণ হতে পারে কি না সেটি নিয়ে কেউ-কেউ ভাবছে। পশ্চিমা দেশগুলোর হুয়াওয়ের উপর চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখবে। খবর পাওয়া যাচ্ছে, মার্কিন প্রশাসন এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে হুয়াওয়ের উপর অবরোধ আরো বিস্তৃত করতে পারে। আমেরিকার ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কে হুয়াওয়ের সকল যন্ত্রপাতি নিষিদ্ধ করা হতে পারে। এ কাজ করার জন্য মার্কিন প্রশাসন হয়তো তাদের মিত্র দেশগুলোর উপরও চাপ দেবে। যদি আমেরিকা এ পথে অগ্রসর হয় তাহলে তাদের ফাইভ জি সার্ভিস ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর অর্থ হচ্ছে, ইউরোপ এবং এশিয়ার নেটওয়ার্কগুলোর সাথে যোগাযোগ করতে পারবে না আমেরিকার নেটওয়ার্ক। তখন ইন্টারনেট বিশ্ব দুইভাগে বিভক্ত হয়ে যাবে। হুয়াওয়ের মতো চীনের কোম্পানিগুলোর সাথে যারা ব্যবসা করছে তারা হবে একটি অংশ। এবং অপর অংশটি হবে যারা ব্যবসা করছে না। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: খালেদা জিয়া: রাজনৈতিক যত সফলতা এবং ভুল প্রেমে প্রতারণার শিকার ৬৩ শতাংশই নারী, বলছে গবেষণা প্রধানমন্ত্রীত্ব নিয়ে থাই রাজপরিবারে ভাই-বোনের দ্বন্দ্ব চীনের টেলিকম কোম্পানি হুয়াওয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়েছে। +text: বাংলাদেশের মানুষের ভারতবিদ্বেষ কি শুধুই ক্রিকেটকে কেন্দ্র করে? বাংলাদেশ আগেই টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়লেও, ভারতের হার অনেক মানুষকেই আনন্দিত করেছে, যা প্রকাশ পেয়েছে তাদের সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট, কমেন্ট ও শেয়ারে। বিবিসি বাংলা'র ওয়েবসাইটে ভারতের সেমিফাইনালে হারের খবরের নিচে রুনেট বড়ুয়া লিখেছেন, "অহংকার পতনের মূল। প্রতিপক্ষকে সম্মান করাও খেলার অংশ, যা ভারত কখনো দেয়নি।" তার কমেন্টের শেষাংশে প্রতিপক্ষকে খোঁচা দিয়ে বানানো বিজ্ঞাপণের ���মালোচনাও উঠে আসে। আজিজা আইরিন লিখেছেন, "আমি খুব খুশী। নিউজিল্যান্ডকে অভিনন্দন।" আইশা রহমান মন্তব্য করেছেন, "ভারতের দর্প ভেঙে চুরমার।" আবু সালেহ লিখেছেন, "ভারতের প্রতি এদেশের মানুষের কতটা ঘৃণা সেটা তারা ক্রিকেট খেলায় পরাজিত হলে রাস্তাঘাট আর ফেসবুক দেখলে বোঝা যায়।" এভাবেই ভারতীয় ক্রিকেট টিম এবং ক্রিকেটারদের মুন্ডুপাত করে স্ট্যাটাস, কমেন্টের মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এই ভারতবিদ্বেষ কি শুধুই ক্রিকেটকে কেন্দ্র করে? আরো পড়তে পারেন: কোহলির অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন সাচিন, সৌরভের বিশ্বকাপের ফরম্যাট বদলানো উচিত, বলছেন কোহলি ভারতকে হারিয়ে নিউজিল্যান্ড ফাইনাল নিশ্চিত করার পর সামাজিক মাধ্যমে ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশীদের ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় অনেকেই মনে করেন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রাজনৈতিক বা কূটনৈতিক সম্পর্ক অনেকটা অপরিবর্তিত থাকলেও বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে এই ভারতবিদ্বেষের ভিত্তি ক্রিকেটের পাশাপাশি আঞ্চলিক রাজনীতিও কিছুটা ভূমিকা রেখেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ বিভাগের শিক্ষক রাজীব নন্দী মনে করেন, ক্রিকেটের হার জিতে আনন্দ ও ক্ষোভ প্রকাশের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ যেভাবে অতিরিক্ত আবেগতাড়িত হয়ে ওঠে, তা স্বাভাবিক। "আমার মনে হয় ২২ গজের খেলার মধ্যে রাজনীতি, জাতীয়তাবাদ ও অসমাপ্ত প্রসঙ্গগুলো চলে আসা খুবই স্বাভাবিক।" উদাহরণ হিসেবে মি. নন্দী বলেন, "ভারত হারলে ভারতের কাশ্মীরের স্বাধীনতাপন্থী মানুষের মধ্যে এক ধরনের আনন্দ কাজ করে, আবার বাংলাদেশ যখন ইংল্যান্ডকে চট্টগ্রাম টেস্টে হারায় তখন চট্টগ্রামের স্থানীয় পত্রিকায় বড় করে হেডলাইন হয় যে 'ব্রিটিশ বধ।' আবার অনেকে বলেন, পাকিস্তানকে বাংলাদেশ ক্রিকেটে হারালে একাত্তরের বিজয়ের আনন্দ পায়।" এই বিষয়গুলোকে সাধারণ মানুষের 'ছদ্ম বাস্তবতা' তৈরির প্রবণতা থেকে আসে বলে মনে করেন মি. নন্দী, যেখানে বাস্তব সমস্যা সমাধান না করে জাতীয়তাবাদী বা দেশাত্মোধক চিন্তাধারা থেকে জন্ম নেওয়া অপ্রয়োজনীয় আবেগকে প্রাধান্য দেয় মানুষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোবায়েদা নাসরিনের মতে, উপমহাদেশে শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং ব্যবসার ক্ষেত্রে ভারতের আগ্রাসন ও আধিপত্য স্থাপনের চেষ্টার কারণেও মানুষের মধ্যে ভারত বিরোধী মনোভাব তৈরি হয়েছে। "বলা হয়ে থাকে, বিশ্বকাপে আইসিসি চায় ভারত ফাইনাল খেলুক। স্বাভাবিকভাবে চিন্তা করলে বোঝা যায়, ভারত ফাইনাল খেললে তাদের দর্শক, বড় বড় বিজ্ঞাপন সংস্থা, সম্প্রচার স্বত্বের হিসেবে ব্যবসায়িকভাবেই লাভবান হবে আইসিসি।" বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: চিনিযুক্ত পানীয় কি ক্যান্সারের কারণ? ব্রিটিশ ট্যাংকার 'আটকের চেষ্টা চালালো ইরান' যাবজ্জীবন কারাবাস শুরু করছেন ভারতের 'দোসা কিং' পদ্মা সেতু তৈরিতে মানুষের মাথা লাগার গুজব কেন? ঢাকার রাস্তায় জড়ো হয়ে বাংলাদেশের খেলা দেখছেন দর্শকরা রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক হিসেব ছাড়াও মনস্তাত্বিক জায়গা থেকেও বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ভারত বিরোধিতা তৈরি হওয়া স্বাভাবিক বলে মনে করেন সমাজবিজ্ঞানীরা। মিজ. নাসরিন বলেন, "ঐতিহাসিকভাবে দেখতে গেলে, দ্বিজাতিতত্বের ভিত্তিতে ভারত ভাগ হওয়ার কারণে এখনও উপমহাদেশের দেশগুলোতে ধর্ম খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।" "তাই ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করা বিজেপি যখন ভারতে নির্বাচনে জয়লাভ করে এবং সেখানে সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর নির্যাতন হয়, তখন স্বাভাবিকভাবেই মুসলিম প্রধান বাংলাদেশের মানুষের মানসিকতাও প্রভাবিত হয়।" সীমান্তে সংঘাত, আঞ্চলিক রাজনীতি ও ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে ভারতের আধিপত্য ও ভারতে উগ্র হিন্দুত্ববাদের ক্রমাগত উত্থানের ফলে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে অবচেতনভাবে ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমা হয়েছে যা খেলার ফলাফলের পর প্রকাশ পায় বলে মনে করেন মি. নন্দী। সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় থাকার কারণে মানুষের এই জাতীয়তাবাদী চেতনার বহি:প্রকাশটা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক তীব্র হয় বলে মনে করেন মি. নন্দী। তিনি বলেন, "সোশ্যাল মিডিয়া হলো আগুনে ঘি ঢালার মতো।" "বিশ্বকাপ চলাকালীন সময় গ্যাসের দাম বৃদ্ধি, শিশু নির্যাতনসহ বেশকিছু ঘটনা ঘটেছে যেগুলো নিয়ে তরুণ সমাজ সামাজিক মাধ্যমে খুব একটা আলোচনা করেনি, যতটা বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ভারতের হার নিয়ে উচ্ছাস প্রকাশ করেছে।" বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে ভারতের হারের পর বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে বাংলাদেশের সমর্থকদের। +text: ধরলা পুরোনো ব্রহ্মপুত্র চিত্রা কপোতাক্ষ তুরাগ শীতলক্ষ্যা তিতাস মেঘনা ধলেশ্বরী বুড়িগঙ্গা আমার নদী পুরোনো ব্রহ্মপুত্র এককালের প্রমত্তা পুরোনো ব্রহ্মপুত্র আজ তার নাব্যতা হারিয়েে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে মানুষে এখন হেঁটেই পার হচ্ছে এই নদ। মূলত পলি জমে আর চর জেগেই এই অবস্থা। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন। কপোতাক্ষ কপোতের চোখের মত একসময়ের জলে ভরা নদ কপোতাক্ষে এখন জল খুঁজে পাওয়াই কঠিন। পলি জমে ভরাট নদে শুকনো মৌসুমে ঘটিও ডোবে না। নদ এখন কচুরিপানার জঙ্গলে ভরা নোংরা পানির সরু খাল। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন। শীতলক্ষ্যা শীতলক্ষ্যার তীরে বসবাসকারী অনেক মানুষ যারা একসময় এই নদীর পানি স্বাস্থ্যকর বলে মনে করতেন, তারাই এখন বলছেন দূষণে কালো হয়ে যাওয়া পানি আর দুর্গন্ধই এখন শীতলক্ষ্যার পরিচয়। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন। তুরাগ নদ তুরাগ নদের দুই পাড়ে একদিকে যেমন ঘনবসতি গড়ে উঠেছে, অন্যদিকে গাজীপুরের কলকারখানা থেকে প্রতিনিয়ত ফেলা বিষাক্ত বর্জ্যের দূষণে দুই পাড়ে তৈরি হচ্ছে গুরুতর স্বাস্থ্য সঙ্কট । বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন। বুড়িগঙ্গা প্রভাবশালীদের ব্যবসা বাণিজ্যের কারণে বুড়িগঙ্গার দুই পাড় এখন দখলের কবলে। রাজধানীর অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের চাপে নদীর পাড় দখল, অবৈধ নির্মাণ এবং দূষণের কবলে বুড়িগঙ্গাকে এখন আর চেনা যায় না। বিস্তারিত পড়তে ক্লিক করুন। চিত্রা এই নদীর দু’কূল চিত্র বা ছবির মতো সুন্দর ছিল বলেই এর নাম চিত্রা। কিন্তু অবৈধ দখলের কারণে সেই সৌন্দর্য এখন বিলীন । জলশূণ্য চিত্রার পাড় ছেড়ে চলে গেছে বহু জেলে যারা জীবিকার জন্য নির্ভর করত চিত্রার ওপরে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন। ধলেশ্বরী যমুনায় সেতু নির্মাণের সময় নদী শাসনের জন্য বাঁধ তৈরির কারণে ধলেশ্বরীর প্রধান চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়ায় শুকিয়ে গেছে এক সময়কার প্রমত্তা নদী ধলেশ্বরী। জলের অভাবে বরবাদ হয়ে গেছে হাজার হাজার একর কৃষিজমি। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন। তিতাস তিতাসে এখন হাজার হাজার মাছের ঘের। দখলদারেরা বাঁশ পুঁতে, জাল দিয়ে ঘিরে আটকে ফেলেছে নদীর জল। নদীতে মাছের চলাচল বিঘ্নিত হয়ে হুমকির মুখে প্রাণীবৈচিত্র্য, পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় পলি জমে কমছে নাব্যতাও। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন। ধরলা ভাঙন-প্রবণ ধরলা ভাঙ্গছে প্রাকৃতিক কারণে, সেইসঙ্গে মানুষের কর্মকাণ্ডেও । ভাঙ্গনের ফলে ঘরবাড়ি হারাচ্ছে সাধারণ মানুষ। বছরের পর বছর অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে প্রতিনিয়ত বদলাচ্ছে নদীর গতিপথ। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন। মেঘনা প্রমত্ত মেঘনার উত্তাল স্রোতে ভাঙন-প্রবণ চাঁদপুর জেলার বহু মানুষ আজ বাস্তুহারা, আর যাদের ঘর টিঁকে আছে বর্ষা মৌসুমে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়ার আতঙ্কে দিন কাটান তারা। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন। বাংলাদেশের ৪৩৫টি নদ-নদীর মধ্যে ৫০ থেকে ৮০টি এখন হুমকির মুখে। গোটা সপ্তাহ জুড়ে নদীপথে ঘুরবেন বিবিসির কাদির কল্লোল। তিস্তা, যমুনা, বাঙ্গালী, পদ্মা এবং মেঘনার তীর ধরে তার যাত্রাপথে তিনি কথা বলবেন নদীতীরের মানুষের সঙ্গে। তার যাত্রাসূচি এবং নদীপারের মানুষের সঙ্গে তার কথোপকথন শুনতে এখানে ক্লিক করুন। বাংলাদেশের নানা প্রান্তে মৃত্যুর মুখে অনেক বড় নদী। মৃত-প্রায় নদীগুলোর কেন এই হাল? এর ফলে কীভাবে বদলে যাচ্ছে এসব নদীর তীরে মানুষের জীবনযাত্রা? জানতে দেখুন মানচিত্রে। +text: নিউ ইয়র্কে গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্স ২০১৮ ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠান। আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্স ২০১৮ অনুযায়ী, তালিকার সর্বনিম্নে আছে বাংলাদেশ, আর তার পাশাপাশি অন্যান্য দেশগুলো হচ্ছে শ্রীলংকা, পাকিস্তান, নেপাল এবং কাজাখস্তান। আর এশিয়া অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উদ্ভাবনী শক্তি দেখা যায় যে দেশে - তা হলো সিঙ্গাপুর। গত জুলাই মাসে এই রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে যারা নিজেদের উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে একটা নতুন কিছু তৈরি করতে চান, তাদের ঠিক কী ধরনের সমস্যা মোকাবেলা করতে হয়? তরুণ উদ্ভাবকদের পথ দেখানোর লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশে ২০১৫ সালে চালু হয় 'দ্য ইনোভেশন হাব'। ইমরান ফাহাদ আরও পড়তে পারেন: উঁচুপদের সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের সুপারিশ বাঙালী শরণার্থীরা নাগরিকত্ব পাবেন: ইমরান খান পরিবেশ দূষণের কারণে কী কী রোগ হতে পারে? এর প্রতিষ্ঠাতা ইমরান ফাহাদ বলছেন, এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে ফান্ডিং-র অভাব। তিনি বলছেন, উদ্ভাবকরা জানেন না তাদের আইডিয়া নিয়ে কোথায় যেতে হবে, তারা যেটা তৈরি করতে যাচ্ছেন তার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থই বা কোথা থেকে জোগাড় হবে? "আমাদের দেশে স্টার্ট-আপ কালচার মাত্র শুরু হয়েছে," বলছেন তিনি, "এধরনের প্রকল্পের জন্য সরকারের কাছে অর্থ ঠিকই রয়েছে। শুধু সে সম���পর্কে মানুষকে আরো বেশি বেশি করে জানাতে হবে।" প্রযুক্তিবিদ অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ মনে করেন, বাংলাদেশ উদ্ভাবনী শক্তির দিকে থেকে অন্য কোন দেশের চেয়ে কম নয়। তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলোর জনঘনত্ব ও বিনিয়োগ বিবেচনা করলে বাংলাদেশের উদ্ভাবনীশক্তির বিষয়ে কোন অভিযোগ করা চলে না। তিনি উদ্ভাবকদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করেন মেধার পরিচর্যার অভাবকে। পাশাপাশি, নানা ধরনের ভৌত সমস্যাও রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। "যিনি পাবনায় বসে নতুন একটা কিছু বানাতে চান, তার সামনে নানা সমস্যা, "তিনি বলছেন, তার কাছে বিদ্যুৎ নেই, ইন্টারনেট সংযোগ নেই। তার কাজের দেখাশোনা জন্য রয়েছে মেন্টরের অভাব।" তিনি বলেন, উদ্ভাবনী সত্তা তৈরি হয় দেশপ্রেম থেকে। অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ "বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের জন্য বহু সফটওয়্যার রয়েছে। কিন্তু তারপরও ব্যাংক মালিকরা বিদেশ থেকে কেনা সফটওয়্যার ব্যবহার করতে বেশি পছন্দ করেন। এটাকে আপনি কী বলবেন?" গবেষণার খাতে সরকারি অর্থায়নের নিয়মকে সম্পুর্ণভাবে বদলে দেয়া দরকার বলে তিনি মন্তব্য করেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে গবেষণার জন্য কিছু অর্থ বরাদ্দ থাকে বলে তিনি জানান, কিন্তু প্রকৃত গবেষণার বদলে সেই টাকা ব্যয় হয়ে যায় যন্ত্রপাতি কেনাকাটায়। নানা দেশের উদ্ভাবনী ক্ষমতার ওপর যে তালিকা তৈরি হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের অবস্থানই সবার পেছনে। +text: ১২ই জুন দুই নেতার দেখা হওয়ার কথা রয়েছে, তবে এই বৈঠকের বিস্তারিত জানানো হয়নি এখনও হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেক জানানো হয়েছে স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় দুই নেতা দেখা করবেন। তবে পারমাণবিক অস্ত্রের কার্যক্রম বন্ধ করার আগ পর্যন্ত উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে। সিঙ্গাপুরে হতে যাওয়া বৈঠকের খুব সামান্য খুঁটিনাটিই জনসাধারণকে জানানো হয়েছে। দুই নেতার বৈঠকের স্থানও এখনও নিশ্চিত নয়। ধারণা করা হচ্ছে, বৈঠকের প্রধান আলোচনার বিষয় হবে কোরিয় উপদ্বীপে পারমাণবিক অস্ত্র কার্যক্রম বন্ধ করার ইস্যুটি। কয়েকজন বিশ্লেষক ধারণা করছেন দুই কোরিয়ার মধ্যকার দ্বন্দ্বের চূড়ান্ত নিষ্পত্তিও হতে পারে এই বৈঠকের মাধ্যমে। দুই নেতার বহ প্রতীক্ষিত বৈঠকটি শেষপর্যন্ত হবে কিনা তা নিয়েই সন্দেহ ছিল। গতমাসে একপর্যায়ে মি. ট্রাম্প এই বৈঠকটি বাতিলও ঘোষণা করেছিলেন। সোমবার হোয়াইট হাউজ মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স সাংবাদিকদের জানান যে, "উত্তর কেরিয়া সম্পর্কে নিজের জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে প্রতিদিন নির্দেশনা নিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।" আরো পড়ুন: কিম জং-আনের কাছে লেখা চিঠিতে কী বলছেন ট্রাম্প? কিমের সাথে শীর্ষ বৈঠক হতেও পারে, বললেন ট্রাম্প ট্রাম্প-কিম শীর্ষ বৈঠক হবে ১২ই জুন সিঙ্গাপুরে 'নিষেধাজ্ঞা অব্যহত থাকবে' মিজ স্যান্ডার্স জানান, পিয়ংইয়ং'এর ওপর ডোনাল্ড ট্রাম্পের "সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ" এর মনোভাব পরিবর্তিত হয়নি। "আমাদের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর আছে এবং তারা সম্পূর্ণরুপে পারমাণবিক অস্ত্র কার্যক্রম বন্ধ না করা পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা অব্যহত থাকবে।" তবে গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে উত্তর কোরিয়ার একজন উচ্চপর্যায়ের নেতার সাথে বৈঠকের পর মি. ট্রাম্প জানান 'সর্বোচ্চ চাপ' শব্দটি তিনি আর ব্যবহার করতে চাননা। দুই দেশের আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে বিধায় এধরণের ভাষা ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে চান তিনি। দুই নেতার বৈঠকের আগে উত্তর কোরিয়া বিভিন্ন রকম কূটনীতিক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী সার্গেই লাভরভ হঠাৎই পিয়ংইয়ং পরিদর্শনে যান। এ বছরের শেষে মি. কিম মস্কো সফর করতে পারেন, এমন পরিকল্পনা চলছে বলে মনে করা হচ্ছে। গত সপ্তাহে উত্তর কোরিয়া জানিয়েছে যে সিরিয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদও উত্তর কোরিয়া সফরের পরিকল্পনা করছেন। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: নেতার হোটেল বিলের টাকা নেই উ. কোরিয়ার? যে কারণে প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারে পিছিয়ে বাংলাদেশ 'সৌদি থেকে ফেরার পর পরিবারেও ঠাঁই নেই' যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে ডোনাল্ড ট্রাম্প আর কিম জং-আনের ১২ই জুনের বৈঠকের প্রস্তুতি ঠিকভাবেই চলছে। +text: ৭৫ বছর আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যখন প্রায় শেষের পথে, তখন আগস্টের ৬ এবং ৯ তারিখে যথাক্রমে জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকি শহরে পরমাণু বোমা ফেলেছিল যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বে সেই প্রথম কোন যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছিল এই গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্র। মারা গিয়েছিল হাজার হাজার মানুষ। পরমাণু বোমা হামলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া হিরোশিমা নগরী হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে পরমাণু বোমা হামলার ৭৫তম বার্ষিকী হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে কত লোক মারা গিয়েছিল, তা মূলত আনুমানিক হিসেব। ধারণা করা হয় হিরোশি��া শহরের সাড়ে তিন লাখ মানুষের মধ্যে ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ কেবল বোমার বিস্ফোরণেই মারা যায়। আর নাগাসাকিতে মারা যায় ৭৪ হাজার মানুষ। কিন্তু পরমাণু বোমার তেজস্ক্রিয়তার শিকার হয়ে পরবর্তী সপ্তাহ, মাস এবং বছরগুলিতে আরও বহু মানুষ মারা গিয়েছিল। এই বোমার শিকার হয়েও যারা বেঁচে গিয়েছিলেন, তারা "হিবাকুশা" বলে পরিচিত। তাদের ভয়ংকর শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে বাকী জীবন বাঁচতে হয়েছে। এই বোমা হামলার পর এশিয়ায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আকস্মিক পরিসমাপ্তি ঘটে। ১৪ই আগস্ট জাপান নিঃশর্তভাবে মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। কিন্তু পরমাণু বোমার ভয়েই জাপান আত্মসমর্পণ করে বলে যে কথা বলা হয়, অনেক সমালোচক তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। তাদের মতে, জাপান এই বোমা হামলার আগে থেকেই আসলে আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ধারণা করা হয় হিরোশিমার ১ লাখ ৪০ হাজার লোক বোমার বিস্ফোরণে সরাসরি মারা যায়। ইউরোপে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের লড়াই থেমে গিয়েছিল ১৯৪৫ সালের ৭ই মে। এরপর মিত্র বাহিনী ২৮শে জুলাই জাপানকে আত্মসমর্পণের সময়সীমা বেঁধে দেয়। তবে এই সময়সীমার মধ্যে জাপান আত্মসমর্পণ করেনি। জাপানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্রিটেন এবং কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর মোট ৭১ হাজার সৈনিক নিহত হয়। এদের মধ্যে ১২ হাজার মারা যায় জাপানের হাতে যুদ্ধবন্দী অবস্থায়। ১৯৪৫ সালের ৬ই আগস্ট জাপানি সময় ঠিক সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বি-২৯ বোমারু বিমান, যেটির নাম ছিল ইনোলা বে, হিরোশিমায় প্রথম পরমাণু বোমা ফেলে। ইনোলা গে বিমানের ক্রুরা। এই বিমান থেকেই হিরোশিমায় বোমা ফেলা হয়। বিশ্বে কোন যুদ্ধে পরমাণু বোমা ব্যবহারের এটাই ছিল প্রথম ঘটনা। হিরোশিমায় যে বোমাটি ফেলা হয়েছিল, মার্কিনীরা তার নাম দিয়েছিল 'লিটল বয়।' এটির শক্তি ছিল প্রায় ১২ হতে ১৫ হাজার টন টিএনটির বিস্ফোরণ ক্ষমতার সমান। পাঁচ বর্গমাইল এলাকা পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছিল এটি। হিরোশিমার শতকরা ৬০ ভাগ বাড়ি একদম ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল বোমার শিকার এক মানুষের ছাপ স্থায়ীভাবে আঁকা হয়ে গেছে সিড়ির পাথরে হিরোশিমায় বোমায় পুড়ে যাওয়া এক নারী হিরোশিমার ধ্বংসস্তুপে পাওয়া এক ঘড়ি। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ঠিক ৮ টা ১৫ মিনিটে হিরোশিমায় বোমা হামলার আগের (বামে নীচে) এবং পরের ছবি (উপরে ডানে) কিন্তু জাপান ���খনো আত্মসমর্পণ করেনি। তিনদিন পর, ৯ই আগস্ট জাপানি সময় সকাল ১১টা ২ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্র আরেকটি পরমাণু বোমা ফেলে নাগাসাকি শহরের ওপর। বোমা হামলার পর হিরোশিমা (বামে) এবং নাগাসাকির (ডানে) আকাশে মাশরুম আকৃতির ধোঁয়ার কুন্ডলি। নাগাসাকিতে যখন বোমা পড়েছিল, তখন রেইকো হাডার বয়স মাত্র নয় বছর। ফটো সাংবাদিক লী কারেন স্টোর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি তাঁর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। "আমি তখন আমার ঘরের প্রবেশ পথে ঢুকেছি এবং আমার মনে হয় এক পা ভেতরে দিয়েছি। তখন হঠাৎ করে এটি ঘটলো।" "এক তীব্র আলোর ঝলকানি এসে আঘাত করলো আমার চোখে। হলুদ, খাকি আর কমলার রঙের আলো, যেন এক সঙ্গে মিশে আছে সব রঙ।" "কী ঘটছে সেটা বোঝার মতো সময় পর্যন্ত আমার ছিল না। মূহুর্তের মধ্যেই সবকিছু যেন সাদা হয়ে গেল। আমার মনে হতে লাগলো, আমি যেন একদম একা, আর কেউ কোথাও নেই। এরপর একটা প্রচণ্ড শব্দ হলো। এরপর আমি জ্ঞান হারালাম।" বোমা বিস্ফোরণের পর নাগাসাকির ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়ীঘর। এই পরমাণু বোমার বিস্ফোরণের পর মানুষ যেরকম মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিল, তা দেখেছেন হাডা। "অনেকেই কনপিরা পর্বতের ওপর দিয়ে আমাদের এখানে পালিয়ে এসেছিল। এদের অনেকের চোখ বেরিয়ে এসেছে, অনেকে প্রায় নগ্ন, অনেকের গায়ের চামড়া পুড়ে ঝুলে আছে।" "আমার মা তাড়াতাড়ি তোয়ালে এবং চাদর নিয়ে আসলেন। তিনি আমাদের এলাকার অন্যান্য মহিলাদের সাথে নিয়ে পালিয়ে আসা লোকজনকে একটা কলেজের অডিটোরিয়ামের দিকে নিয়ে গেলেন। সেখানে তাদের শুইয়ে রাখার ব্যবস্থা করা হলো।" "এরা সবাই পানি চাইছিল। আমাকে বলা হলো ওদের পানি দিতে। কাজেই আমি একটা বাটি নিয়ে কাছের নদীতে গেলাম। সেখান থেকে তাদের পান করার জন্য পানি নিয়ে আসলাম।" "এক ঢোক পানি খেয়েই তারা মারা গেল। একজনের পর একজন মারা যাচ্ছিল।" বোমার পর বায়ু দূষণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মুখোশ পড়েছে হিরোশিমার শিশুরা। জাপান নিঃশর্তভাবে আত্মসমর্পণ করে ১৪ই আগস্ট। সেই একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের প্র্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান হোয়াইট হাউসের বাইরে সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। তিনি বলেন, "পার্ল হারবারে আক্রমণের পর থেকে এই দিনটির জন্যই আমরা অপেক্ষা করছিলাম। আজকের এই দিনে অবশেষ ফ্যাসিবাদের মৃত্যু ঘটলো, আমরা সব সময় জানতাম ফ্যাসিবাদ পরাস্ত হবেই।" এর পরদিন রেডিওতে জাপানের সম্রাট হিরোহিতোকে প্রথমবার��র মতো রেডিওতে বক্তৃতা দিতে শোনা যায়। এতে তিনি জাপানের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের জন্য "এক নতুন এবং নিষ্ঠুর বোমা"কে দায়ী করেন। তিনি বলেন, "আমাদের যদি লড়াই চালিয়ে যেতে হয়, তা কেবল একটি জাতি হিসেবে জাপানের চুড়ান্ত পতন এবং ধ্বংসই ডেকে আনবে না, তা পুরো মানব সভ্যতাকেও সম্পূর্ণ নির্মূল করে দিতে পারে।" ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্লিমেন্ট এটলী মন্তব্য করেছিলেন, "আমাদের সর্বশেষ শত্রুকেও আমরা শেষ করে দিতে পেরেছি।" তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ দিয়ে আরও বলেছিলেন, "তাদের বিস্ময়কর প্রচেষ্টা ছাড়া প্রাচ্যে যুদ্ধ আরও বহু বছর ধরে চলতেই থাকতো।" বোমা হামলার এক বছর পরের হিরোশিমা জাপানের আত্মসমর্পণের পর ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডায় বিজয় উৎসব করার জন্য দুদিন জাতীয় ছুটি ঘোষণা করা হয়। ১৫ই আগষ্ট যেদিন জাপানের বিরুদ্ধে বিজয় ঘোষণা করা হয়, সেদিন মিত্র জোটের দেশগুলিতে লাখ লাখ মানুষ কুচকাওয়াজ এবং রাস্তায় রাস্তায় উৎসবে যোগ দেয়। লন্ডনে বাকিংহাম প্রাসাদের ব্যালকনি থেকে রাজপরিবারের সদস্যরা উল্লসিত জনতার দিকে হাত নাড়েন। বোমায় বিধ্বস্ত এক স্কুলঘরে ক্লাস চলছে ১৯৪৬ সালে জাপান আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণের দলিলে সই করেছিল ২রা সেপ্টেম্বর। টোকিও উপসাগরে থাকা মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস মিসৌরিতে এই দলিল সই করা হয়। নীচের ছবিতে যে গম্বুজটি দেখা যাচ্ছে, সেটি হিরোশিমায় পরমাণু বোমা ফেলার পর যে কটি ভবনের কাঠামো দাঁড়িয়ে ছিল তার একটি। পরমাণু বোমা হামলার স্মারক হিসেবে এটিকে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এই গম্বুজটির অবস্থান হিরোশিমার শান্তি স্মারক পার্কে। এটিকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ বলে ঘোষণা করেছে। সব ছবির স্বত্ব সংরক্ষিত (এই প্রতিবেদন এমন অনেক ছবি এবং তথ্য আছে, যা আপনাকে বিচলিত করতে পারে।) +text: গত বছরে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার দাবিতে হওয়া শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় ভুল খবর প্রচারের অভিযোগে ফটো সাংবাদিক শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে মামলা করা হয় এবং ১০০ দিনের বেশি সময় কারাগারে থাকেন তিনি। (ফাইল ছবি) যুক্তরাজ্য এবং কানাডা সরকারের যৌথ আয়োজনে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রশ্নে দু'দিনের এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন আজ লন্ডনে শুরু হচ্ছে - বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকদের সাথে শহিদুল আলমসহ বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন সাংবাদিক এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বা মত প্রকাশের স্বাধীনতা কতটা আছে - সেই প্রশ্ন গত কয়েকমাসে বেশ কয়েকবার সামনে এসেছে, যে বিষয়টি লন্ডন সম্মেলনে আলোচনায় অগ্রাধিকার পাবে বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন। বাংলাদেশের আলোচিত ফটো সাংবাদিক শহিদুল আলম বিবিসি বাংলাকে জানান, বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকতায় কতটুকু স্বাধীনতা আছে, সেই বিষয়টি আলোচনা করা হবে এই সম্মেলনে। বাংলাদেশে সম্প্রতি কার্যকর হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সমালোচনা এবং বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার বিষয়গুলোকে এই সম্মেলনে তুলে ধরবেন বলে জানান মি. আলম। "রাষ্ট্রকে টিকিয়ে রাখতে আদালত, পুলিশের মত বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান থাকে, যেগুলোকে এক এক করে ভাঙা হয়েছে। গণমাধ্যম এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে না পড়লেও দেশের অধিকাংশ গণমাধ্যমকেই স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়া হচ্ছে না।" মি. আলমের মতে, বাংলাদেশে কয়েকটি কণ্ঠ ছাড়া কোনো গণমাধ্যমই সরকারের সমালোচনা করতে পারছে না। আরো পড়তে পারেন: যেসব ছবির মাধ্যমে আলোড়ন তোলেন শহিদুল আলম 'অনেকে এখন চুপ, তাই আমার কণ্ঠস্বর স্পটলাইটে' 'মুক্ত বাতাসে নি:শ্বাস নিচ্ছি': শহিদুল আলম তথ্যমন্ত্রীর দাবি: কতটা সত্যি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে লন্ডনে শুরু হতে যাওয়া এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দেয়ার আগে, বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বিবিসি'র কাছে দাবি করেছেন, ব্রিটেনের গণমাধ্যমের চেয়েও স্বাধীন বাংলাদেশের গণমাধ্যম। অথচ, ২০১৯ সালে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস নামের আন্তর্জাতিক সংগঠন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে যে বৈশ্বিক প্রতিবেদন ছেপেছে, সেখানেও ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান চার ধাপ নেমে দাড়িয়েছে ১৫০তম অবস্থানে। গত বছরে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার দাবিতে হওয়া শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় ভুল খবর প্রচারের অভিযোগে মি. আলমের বিরুদ্ধে মামলা করা হয় এবং ১০০ দিনের বেশি সময় কারাগারে থাকেন তিনি। বর্তমানে জামিনে মুক্ত থাকলেও তার বিরুদ্ধে আইনি কার্যক্রম চলছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়ে তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্য সম্পর্কে শহিদুল আলমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "শুধু গণমাধ্যম নয়, সব ক্ষেত্রেই নিজেদের বিরুদ্ধে হওয়া সমালোচনার জবাবে মূল সমস্যাটাই অস্বীকার করে সরকার।" "সরকারের বক্তব্য কিন্তু সবক্ষেত্রে শুরুই হয় অস্বীকার করার ভিত্তিতে। সরকার বলছে ক্রসফায়ার হয় না, গুম হয় না, দুর্নীতি হয় না, পক্ষপাতিত্ব হয় না এবং তারা বলছে যে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রচারে কোন বাধাবিপত্তি নেই।" মি. আলম মনে করেন, সবসময় সরাসরি বাধা দেয়া না হলেও পরোক্ষভাবে বাধা প্রয়োগ করা হয় গণমাধ্যমের ওপর। "সংবাদমাধ্যমের বিজ্ঞাপণ কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়, তারা সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলতে চাইলে কীভাবে তাদের বিরুদ্ধে চড়াও হয়ে ওঠে এবং এই মুহূর্তে কতজন সাংবাদিকের ওপর মামলা রয়েছে - সেগুলো যাচাই করলেও কিছুটা বোঝা যাবে যে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান থাকলেও কেন তাদের সত্যিকার অর্থে বাকস্বাধীনতা নেই।" টাইম ম্যাগাজিনের সম্মাননাকে কীভাবে দেখছেন শহিদুল আলম? তবে বাংলাদেশের এসব সমস্যা সমাধানে লন্ডনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন আলোচনা করা কতটা কার্যকর হবে, সেবিষয়েও সন্দেহ পোষণ করেন মি. আলম। "জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের মত কেউ যখন এসব দেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে বা তথ্য দেয় - যেসব তথ্যের কারণে তারা বিপদে পড়ে - তখন তারা কী করে আমরা তা'ও দেখেছি।" পশ্চিমা দেশগুলোর নিজেদের স্বার্থ সংরক্ষণে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে দ্বিমুখী নীতি অবলম্বন করার বিষয়েও সম্মেলনে আলোচনা করবেন বলে জানান মি. আলম। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: ঢাকা শহরে রিকশার ভবিষ্যৎ কী ফাঁস হওয়া ব্রিটিশ ইমেইল সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে ৫৮৬ কেন্দ্রে সব ভোট নৌকা মার্কায় ভারতে ডিএনএ ডেটাব্যাঙ্ক নিয়ে বিরোধীদের আপত্তি কেন গণমাধ্যমের বাকস্বাধীনতা সহ অন্যান্য যেসব বিষয়ে বাংলাদেশের সরকারের সমালোচনা করা হয় সেগুলোর প্রত্যেকটির ক্ষেত্রে সরকার মূল সমস্যাকে অস্বীকার করে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের আলোকচিত্র সাংবাদিক শহিদুল আলম। +text: মি: টিলারসন বলেছেন "আমরা শাসন ব্যবস্থায় কোনো পরিবর্তন আনার চিন্তা করছিনা। আমরা সরকারের পতনও চাইছি না" তবে দেশটি ক্রমাগত পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যে হুমকি তৈরি করছে তাকে 'অগ্রহণযোগ্য' বলে উল্লেখ করলেও যুক্তরাষ্ট্র অনেকটা নরম সুরেই বলছে তারা উত্তর কোরিয়ার সরকারের পতন চায় না । উত্তর কোরিয়ার প্রতি আলোচনার আহ্বান জানিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন, "আমরা শত্রু নই"। এদিকে, একজন সিনিয়র রিপাবলিকান সিনেটর ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একমত হয���েছেন যে প্রয়োজন হলে বিকল্প হিসেবে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানোর কথা ভাবা হবে। পিয়ংইয়ং সবশেষ আন্ত:মহাদেশী ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা সফল হয়েছে দাবি করে বলে যে যুক্তরাষ্ট্রের পুরো ভূখণ্ডই উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র আওতার মধ্যে রয়েছে। উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচিকে ঘিরে ওই অঞ্চলে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে মি: টিলারসন বলছেন "আমরা শাসন ব্যবস্থায় কোনো পরিবর্তন আনার চিন্তা করছিনা। আমরা সরকারের পতনও চাইছি না, কোরীয় উপদ্বীপের পুন:একত্রীকরণের বিষয়েও কিছু বলছি না"। "আমরা উত্তর কোরিয়ার শত্রু নই। আমরা তাদের জন্য কোন হুমকিও নই" বলেন মি: টিলারসন। উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী ভূমি থেকে ভূমিতে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে মহড়া চালিয়েছে। পেন্টাগন সামরিক সক্ষমতাও বাড়িয়েছে কিন্তু একইসাথে হুশিয়ার করে দিয়ে বলেছে সংঘর্ষ হলে ব্যাপক বিপর্যয় হবে। আর মি: টিলারসন ওই একই কথার পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছেন, বলছেন যে যুক্তরাষ্ট্র সরকার পরিবর্তন চায় না, তাদের লক্ষ্য হলো দুই দেশের মধ্যে আলোচনা। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: 'আমার দেয়া ছাগল মারা যায় নি. মানহানিও হয়নি' আমেরিকার স্কুলে ধর্মগ্রন্থ পড়া বন্ধ হয়েছিল যে মামলায় বন্ধুত্ব ও সম্মান ছাড়া সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার মানে হয়না: সুবর্ণা মুস্তাফা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন যে তার সরকার উত্তর কোরিয়ার শাসনব্যবস্থায় কোনো পরিবর্তন আনতে চায় না, বরং তারা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহী। +text: দবিরুল ইসলাম চৌধুরী তার বাড়ির পেছনের ৮০ মিটার বাগানে পায়ে হেঁটে মোট ৯৭০ বার চক্কর দিয়েছেন। পূর্ব লন্ডনের বো এলাকার বাসিন্দা দবিরুল ইসলাম চৌধুরীকে অর্ডার অফ দ্যা ব্রিটিশ এম্পায়ার (ওবিই) পদক দেয়া হয়েছে। "এই দুর্লভ সম্মান পেয়ে আমি নিজেকে অত্যন্ত ভাগ্যবান বলে মনে করছি," মি. চৌধুরী বলেন, "আমার অন্তরের অন্ত:স্থল থেকে সবার প্রতি ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।" রানি এলিজাবেথের জন্মদিন উপলক্ষে ব্রিটেনের সমাজ-জীবনে যারা বিশেষ ভূমিকা রাখেন প্রতিবছর তাদের সম্মান জানানোর রীতি রয়েছে। চলতি বছর জুন মাসে এই সম্মাননা ঘোষণার পরিকল্পনা থাকলেও করোনাভাইরাস মহামারির সময় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী, অর্থদাতা এবং স্বেচ্ছাসেবকদের এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তা স্থগিত করা হয়। রোজা রেখে বাড়ির কমিউনাল বাগানে চক্কর দিচ্ছেন দবিরুল ইসরাম চৌধুরী। গত রমজান মাসের পুরোটা সময় দবিরুল ইসলাম চৌধুরী রোজা রেখে প্রতিদিন তার বাড়ির পেছনের ৮০ মিটার বাগানে পায়ে হেঁটে মোট ৯৭০ বার চক্কর দিয়েছেন। তার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশ, ব্রিটেন এবং আরো কিছু দেশের করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত মানুষের সহায়তার জন্য অর্থসাহায্য সংগ্রহ করা। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন টম মুর তার বাড়ির বাগানে পায়ে হেঁটে স্বাস্থ্য-কর্মীদের জন্য যেভাবে প্রায় সাড়ে তিন কোটি পাউন্ড চাঁদা তুলেছিলেন তা দেখে উৎসাহিত হয়েছিলেন মি. চৌধুরী। রোজার মাসের পুরোটা সময় তিনি একইভাবে পায়ে হেঁটে মোট চার লক্ষ ২০ হাজার পাউন্ড সংগ্রহ করেন। ক্যাপ্টেন টম মুর, দবিরুল ইসলাম চৌধুরীর যিনি অনুপ্রেরণা, পায়ে হেঁটে ব্রিটেনের স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য তিনি প্রায় সাড়ে তিন কোটি পাউন্ড চাঁদা তোলেন। এর মধ্যে এক লক্ষ ১৬,০০০ পাউন্ড দেয়া হয় স্বাস্থ্য বিভাগ এনএইচএস-কে। বাকি অর্থ ৫২টি দেশের ৩০টি দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দান করা হয়। মি. চৌধুরীর এই প্রচেষ্টার প্রশংসা করে বিরোধীদল লেবার পার্টির প্রধান স্যার কিয়ার স্টার্মার বলেছেন, "আমাদের সবার কাছে তিনি প্রেরণার এক উৎস।" 'এই স্বীকৃতি ইমিগ্র্যান্ট সমাজের' বিবিসি বাংলার সাথে এক সাক্ষাৎকারে দবিরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, তিনি ব্রিটেনের বাঙালি সমাজ, বয়স্ক সমাজ এবং অভিবাসী সমাজের পক্ষ থেকে এই ওবিই পদক গ্রহণ করছেন। তিনি জানান, সপ্তাহ দু'য়েক আগে রানির দফতর থেকে ওবিই পদক প্রাপ্তির চিঠি পেয়ে তিনি বেশ অবাকই হয়েছিলেন। অর্থ সংগ্রহ অভিযানের সময় তৈরি বিবিসি বাংলার ভিডিও রিপোর্ট: হেঁটে ভাইরাসে বিপর্যস্তদের জন্য প্রায় দুকোটি টাকা তুলেছেন শতবর্ষী এক ব্রিটিশ বাংলাদেশি "আমরা যখন কোন একটা ভাল কাজ করি তখন বিশেষ কোন প্রাপ্তির কথা মাথায় রাখি না," বলছিলেন তিনি, "তবু এই স্বীকৃতির জন্য আমি খুবই আনন্দিত।" আর এই পদক তার জীবনের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ কোন পরিবর্তন আনবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন। তবে তার কাজ যদি অন্য কাউকে উৎসাহিত করে তবেই তিনি খুশি হবেন বলে জানালেন। রানির পদক পাওয়া��� পর তিনি যেসব দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্কিত সেগুলোর প্রতি মানুষের সমর্থন আরও বাড়বে বলে তিনি আশা করেন। তার ছেলে আতিক চৌধুরী বলেন, দবিরুল ইসলাম চৌধুরী তার জন্মস্থান সিলেটের দিরাইয়ে বাংলা ফিমেল অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি চ্যারিটির সাথে যুক্ত। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দরিদ্র, অসহায় ও অনাথ মেয়েদের জন্য প্রতিষ্ঠানটি ভরণপোষণ ও শিক্ষার ব্যবস্থা করে। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানে মোট ৩২০ জন মেয়ে রয়েছে। এদের উচ্চশিক্ষার দায়িত্ব ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েছে বলে তিনি জানান। মহামারির জন্য আটকে আছে উৎসব রানির পদক পাওয়ার পরও চৌধুরী পরিবার এনিয়ে কোন আনন্দ-উল্লাস করার সুযোগ পায়নি। আতিক চৌধুরী জানালেন, তার বাবা বয়োবৃদ্ধ বলে মহামারির সময়ে 'সেলফ আইসোলেশন'-এ রয়েছেন। ফলে একমাত্র তিনি এবং একজন সেবাকর্মী ছাড়া কারও সাথে তিনি দেখা করতে পারছেন না। "সিলেব্রশন বলাতে যা করেছি তা হলো ফ্যামিলির যে যেখানে আছে সেখান থেকে সবাই মিলে টেলিফোনে তার সাথে কথা বলেছি, তাকে অভিনন্দন জানিয়েছি।" জন্ম সিলেটে কর্ম বিলেতে দবিরুল ইসলাম চৌধুরীর জন্ম ১৯২০ সালে সিলেটের দিরাইতে। ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে উচ্চশিক্ষার আশায় ১৯৫৭ সালে তিনি বিলেতের পথে পাড়ি জমান। এরপর তিনি সেন্ট অলবান্স শহরে বসবাস করেন এবং সেখানে একজন কমিউনিটি লিডার হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। উনিশশো একাত্তর সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধের সময়েও তিনি অর্থ সাহায্য সংগ্রহ করেছিলেন। প্রাসঙ্গিক খবর: বাগানে হেঁটে‌ দু'কোটি পাউন্ড চাঁদা তুললেন শতবর্ষী সৈনিক করোনাভাইরাস : সার্ক দেশগুলোর ইমার্জেন্সি তহবিল ব্রিটেনের এক শতবর্ষী বাঙালি যিনি রোজার মাসে পায়ে হেঁটে করোনাভাইরাস তহবিলের জন্য প্রায় সাড়ে চার লক্ষ পাউন্ড চাঁদা তুলেছেন তাকে রানির সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। +text: আসাদউদ্দিন ওয়াইসি কংগ্রেসের নেতারা সরাসরি বলছেন, মি. ওয়াইসির দল মুসলিম ভোট কেটেছে বলেই বিজেপি জোট বিহারে আবার ক্ষমতায় আসতে পারল। আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বিবিসির কাছে এই অভিযোগ অবশ্য জোরালোভাবে অস্বীকার করেছেন - এবং বলছেন ভারতীয় মুসলিমরা তাকে বিজেপির ''উপযুক্ত জবাব'' হিসেবে দেখছেন বলেই বিভিন্ন রাজ্যে বেছে নিচ্ছেন। মহারাষ্ট্র ও বিহারের পর তার পরবর্তী নিশানা যে পশ্চিমবঙ্গ, সেটাও তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিন তালা��� রদ করার বিরোধিতা থেকে শুরু করে বাবরি মসজিদ ভাঙার ইস্যু বা নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মি. ওয়াইসি যেভাবে সরব হয়েছেন, তাতে ভারতীয় মুসলিম সমাজের একটা বড় অংশ তাকে সেদেশে মুসলিমদের ''নতুন নেতা''র ভূমিকায় দেখতে শুরু করছেন। বস্তুত প্রায় ৯৩ বছরের পুরনো রাজনৈতিক দল মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের প্রভাব মাত্র বছরকয়েক আগেও হায়দ্রাবাদ শহরের গন্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। সদ্যসমাপ্ত বিহারের নির্বাচনে একটি জনসভায় মি ওয়াইসি ভাষণ দিচ্ছেন আরও পড়তে পারেন: 'তাহলে আডভানি-জোশীরা সেদিন মঞ্চে মিষ্টি বিলি করছিলেন কেন?' ভারতে তিন তালাক দিলে তিন বছরের কারাদণ্ড ভারতে নাগরিকত্ব আন্দোলন আলাদা যে পাঁচটি কারণে কিন্তু এখন মহারাষ্ট্র থেকেও তাদের নির্বাচিত এমপি ও এমএলএ-রা আছেন, গত রাতে বিহার বিধানসভাতেও তাদের নতুন পাঁচজন বিধায়ক যুক্ত হলেন। দলনেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি যেভাবে দেশের নতুন নতুন প্রান্তে জমি খুঁজে পাচ্ছেন তাতে তাকে ভারতীয় মুসলিম সমাজের উদীয়মান মুখ হিসেবে অনেকে দেখছেন ঠিকই - কিন্তু কংগ্রেস তাকে দিচ্ছে ''ভোট-কাটুয়া''র তকমা। হায়দ্রাবাদের রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক শাহিদ মিও বিবিসিকে বলছিলেন, "এটা ঠিকই যে ওয়াইসি খুব দ্রুত উঠে আসছেন ও মানুষ তাকে নানা জায়গায় গ্রহণও করছে, তবে তাকে নিয়ে নানা বিপরীতমুখী ন্যারেটিভও আছে।" "অনেকেই তাকে বিজেপির বি-টিম হিসেবে দেখেন, কারণ এখনও ভারতীয় মুসলিম সমাজের বেশির ভাগ ভোট কংগ্রেস বা তাদের জোটের দলগুলোই পায় - কিন্তু ওয়াইসি সেই ভোট কেটে বিজেপিরই সুবিধা করে দিচ্ছেন বলে তাদের অভিযোগ," বলছেন শাহিদ মিও। অনেকে অভিযোগ করছে তিনি 'বিজেপির দালাল' হিসাবে কাজ করেছেন। "এখন নতুন নতুন রাজ্যে তার আবেদন কতটা স্থায়ী হয় সেটা দেখার বিষয় - কিন্তু এখানে অন্তত নানা সেবামূলক কাজকর্ম, ত্রাণ ইত্যাদির সুবাদে বলা যেতে পারে হায়দ্রাবাদ মানেই ওয়াইসি, ওয়াইসি মানেই হায়দ্রাবাদ।" কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং - যিনি বিহার নির্বাচনের ফল বেরোনোর পর মি ওয়াইসিকে 'ভোট কাটুয়া' বলেছেন বিহারে যেমন এই প্রথমবারের মতো ভোটে লড়ল মি. ওয়াইসির দল - আর মুসলিম-অধ্যুষিত সীমাঞ্চল ও আশেপাশে কুড়িটি আসনে প্রার্থী দিয়ে পাঁচটিই জিতে নিয়েছে তারা। সেই সঙ্গে তারা আরজেডি-কংগ্রেসের জোট ''মহাগঠবন্ধন''কে হারিয়ে দিয়েছে আরও বহু আসনে। বিহারের পূর্ণিয়া-কাটিহার অঞ্চলে মুসলিম তরুণ-তরুণীরাও বিবিসিকে বলছিলেন, ওয়াইসির মতো বলিষ্ঠ একজন নেতা, যার কোনও অপরাধের ইতিহাসও নেই - তাদেরকে আকৃষ্ট করেছেন। তবে বিভিন্ন বিষয়ে তার বিতর্কিত বয়ান নিয়েও অনেক মুসলিম আবার সন্দিগ্ধ। ওদিকে বিজেপির দালাল বা বি-টিম, নিরন্তর এই অভিযোগ শুনতে শুনতে ক্লান্ত আসাদউদ্দিন ওয়াইসিও এখন কড়া ভাষায় এর জবাব দিচ্ছেন। হায়দ্রাবাদে মক্কা মসজিদের বাইরে পুলিশকে শাসানি দিচ্ছেন আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। ২০০৭ বিহারের সাফল্যের পর তিনি বলছিলেন, "আমার ইতিহাস মানুষ জানে না। বারো-তেরো বছর বয়স থেকে শুনছি আমাদের বাড়ির সামনে এসে আরএসএস গুন্ডারা নোংরা স্লোগান দিচ্ছে, ওয়াইসি কবরে যাও কিংবা পাকিস্তানে। "ভেতর থেকে এটা আমায় আরও শক্ত করে তুলেছে, প্রতিবাদ করে জেলে গিয়ে পুলিশের মারও খেয়েছি," বলেন মি. ওয়াইসি। "কোনও শিসমহল থেকে আমি রাজনীতিতে আসিনি, কেউ আমার জন্য মখমলের কার্পেটও বিছিয়ে রাখেনি। "ফলে কে কী বলল আমার কিচ্ছু যায় আসে না, আর ভোট-কাটুয়া বা বি-টিম পুরনো হয়ে গেছে - অক্সফোর্ড অভিধান ঘেঁটে বরং নতুন গালাগালি খুঁজতে বলব," পাল্টা কটাক্ষ তার। মি. ওয়াইসি-র পরবর্তী নিশানা পশ্চিমবঙ্গে মাসছয়েক পরের বিধানসভা নির্বাচন - কিন্তু রাজ্যের প্রধানত বাংলাভাষী মুসলিমদের মধ্যে তাঁর আবেদন কতটা হবে তা নিয়ে সন্দিহান কলকাতার সমাজ বিশ্লেষক শাওনি শবনম। পার্লামেন্ট অধিবেশনে যোগ দিতে আসছেন আসাদউদ্দিন ওয়াইসি ড: শবনম বিবিসিকে বলছিলেন, "আসাদউদ্দিন ওয়াইসি খুবই বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব, কারণ নানা বিষয়েই তিনি খুব রক্ষণশীল মনোভাব নিয়ে চলেন। তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কী, তিনি ঠিক কী করতে চান তা নিয়েও বিতর্ক আছে। "হায়দ্রাবাদের রাজনীতিবিদ উনি, দেশের পশ্চিমাঞ্চলেও কিছুটা প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছেন - কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে কতটা সুবিধা করতে পারবেন তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।" "কলকাতায় কিছু সংখ্যক উর্দুভাষী মুসলিমের মধ্যে হয়তো পারবেন, কিন্তু এ রাজ্যের বেশির ভাগ বাংলাভাষী মুসলিম জনগোষ্ঠী তাকে কতটা গ্রহণ করবেন তা নিয়ে আমি খুব নিশ্চিত নই", বলছিলেন ড: শবনম। তবে পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম ভোটে ভাগ বসিয়ে মি. ওয়াইসি তার ক্ষমতায় ফেরার রাস্তা কঠিন করে তুলবেন কি না, সে বিষয়টা তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী মমতা ব্যানার্জিকে অবশ্যই দুশ্চিন্তায় রেখেছে। ভারতের ���ায়দ্রাবাদ-ভিত্তিক রাজনৈতিক দল এআইএমআইএম বিহারের নির্বাচনে অভাবিত সাফল্য পাওয়ার পর ওই দলের নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসির বিরুদ্ধে আবার বিজেপিকে সুবিধা করে দেওয়ার অভিযোগ তোলা হচ্ছে। +text: বাদশাহ সালমান তাঁর এমন প্রশংসায় 'বিস্মিত' হয়ে নির্দেশ দেন মি: আনজিকে যেন বরখাস্ত করা হয় রামাদান আল-আনজি'র ওই কলাম প্রকাশিত হয়েছিল আল-জাজিরাহ পত্রিকায়। কলামে যেসব শব্দ বা বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে বাদশাহকে প্রশংসা করেছেন লেখক, সাধারণত সেসব বৈশিষ্ট্য বা শব্দাবলী সৃষ্টিকর্তার প্রশংসায় ব্যবহার করা হয়। যদিও সৌদি আরবে বাদশাহকে আবেগপ্রবনভাবে প্রশংসা করা যায় আর এটা অস্বাভাবিকও কিছু নয়, কিন্তু ঈশ্বরতুল্য বা দেবতাতুল্য প্রশংসা দেশটিতে একেবারেই সমর্থিত নয়। বাদশাহ সালমান তাঁর এমন প্রশংসায় 'বিস্মিত' হয়ে নির্দেশ দেন মি: আনজিকে যেন বরখাস্ত করা হয়- সৌদি সংবাদমাধ্যমে এমনটাই বলা হচ্ছে। শুক্রবার ওই কলামটি ছাপানো হয়। ইতোমধ্যেই পত্রিকাটি ওই লেখার জন্য লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়েছে। মি: আনজি তাঁর লেখায় বাদশাহ সালমানকে 'হালিম' বা ধৈর্যশীল এবং 'শাদেদ আল-ইকাব' বলে বর্ণনা করেন। আর এ দুটি শব্দই সৃষ্টিকর্তার প্রশংসায় ব্যবহৃত হয়। আল জাজিরাহ পত্রিকা ক্ষমাসূচক বিবৃতিতে লিখেছে "লেখক যেই প্রশংসাসূচক শব্দ তাঁর লেখায় ব্যবহার করেছে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সৃষ্টিকর্তা তাঁকে যা প্রদান করেছেন তার পরিবর্তে তার এমনটা করা একদমই ঠিক নয়। সৃষ্টিকর্তা তাকে রক্ষা করুন"। সৌদি সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, ওই পত্রিকার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ারও নির্দেশ দিয়েছে সরকার। আরো পড়ুন: সৌদি আরবের বাদশাহ সালমানকে প্রশংসা করার মাত্রা এতটাই বেশি ছিল যে এই অপরাধে দেশটির একজন লেখককে বরখাস্ত করা হয়েছে। +text: যুক্তরাষ্ট্রে অভ্যন্তরীণ সহিংসতা বাড়ার শঙ্কা হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তর জানায়, গত ৬ই জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার ঘটনা সম্ভবত কিছু চরমপন্থীকে সাহসী করে তুলেছে। এক নির্দেশনা বার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীন নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এই দপ্তর সতর্ক করে যে "সরকারি ক্ষমতার ব্যবহারে হতাশ কিছু ব্যক্তি"র কাছ থেকে হুমকির শঙ্কা রয়েছে। তবে সুনির্দিষ্ট কোন হামলার পরিকল্পনা সম্পর্কে এখনও জানা যায়নি বলে এতে উল্লেখ করা হয��। জো বাইডেনের নির্বাচনী জয়ের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়ে যখন কংগ্রেসে অধিবেশন চলছিল, ঠিক তখনই ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালানো হয়। এর আগে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউজের বাইরে তার হাজার হাজার সমর্থকের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন এবং তার অপ্রমানিত অভিযোগ পুনরায় উল্লেখ করে বলেন যে তার কাছ থেকে নির্বাচন চুরি করা হয়েছে। আরো পড়ুন: সমর্থকদের তিনি বলেন: "আপনারা যদি শক্তভাবে লড়াই না করেন, তাহলে আপনাদের দেশই আর থাকবে না।" একদল মানুষ তখন ক্যাপিটল ভবনের দিকে ধাবিত হয় এবং তারা নিরাপত্তা রক্ষীদের হটিয়ে ভবনে প্রবেশ করে। ওই দাঙ্গায় ক্যাপিটলের একজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৫ জন মারা যায়। সহিংসতা উস্কে দেয়ার অভিযোগে এরই মধ্যে প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত করা হয়েছে মি. ট্রাম্পকে। আর সেনেটে তার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে আগামী মাসে। নির্দেশনা বার্তাটি বুধবার প্রকাশিত হয়। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তর মনে করে যে বর্ধিত এই হুমকি "নতুন প্রেসিডেন্ট শপথ নেয়ার কয়েক সপ্তাহ" পর্যন্ত বজায় থাকবে। এতে বলা হয়, "এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, আদর্শগতভাবে অনুপ্রাণিত কিছু সহিংস চরমপন্থী, যাদের সরকারি কর্তৃপক্ষ এবং প্রেসিডেন্ট পদের পরিবর্তন নিয়ে অভিযোগ রয়েছে, আর মিথ্যা বক্তব্যের কারণে তাদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে, তারা আরও উস্কানী পেতে পারে কিংবা সহিংসতা ঘটাতে পারে।" নির্দেশনা বার্তায় আরো বলা হয়, ক্যাপিটল ভবনে হামলার ঘটনার মাধ্যমে উদ্ভূদ্ধ কিছু "অভ্যন্তরীণ সহিংস চরমপন্থী" হামলা চালাতে পারে "নির্বাচিত কর্মকর্তা ও সরকারি দপ্তরে"। ক্যাপিটলের সহিংসতায় পাঁচজন নিহত হয়েছিলো হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তর জনসাধারণের জন্য গত এক বছরের মধ্যে এই প্রথম এমন একটি সতর্কতা জারি করলো। ক্যাপিটলে হামলা পুরো দেশকে হতবাক করেছে এবং কর্তৃপক্ষ এর সাথে সংশ্লিষ্টদের ধরতে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। এই সহিংসতার সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এ পর্যন্ত ৪০০ সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং গ্রেফতার করা হয়েছে ১৩৫ জনকে। ক্যাপিটলে হামলাকারীরা টেলিগ্রামে প্রশংসিত হয়েছিলো লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে বিবিসি নিউজের রেগান মরিস জানান, মার্কিন সরকার আমেরিকাবাসীকে ওইসব "অভ্যন্তরীণ সহিংস চরমপন্থীদের" কাছ থেকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে, যারা ৬ই জানুয��ারির দাঙ্গা থেকে অনুপ্রাণিত হতে পারে। দেশটির অনেকেই মনে করেন যে যারা ক্যাপিটলে হামলা চালিয়েছিল তারা "দেশপ্রেমিক" এবং তাদের গুণকীর্তন করা উচিত। টুইটার এবং ফেসবুকে নিষিদ্ধ হওয়ার পর অনেক ডানপন্থী সংগঠন সামাজিক মাধ্যম 'টেলিগ্রাম' ব্যবহার করতে শুরু করে। ক্যাপিটলে হামলাকারীদের স্বাধীনতাযোদ্ধা এবং বীর হিসেবে প্রশংসা করা হয়। চ্যাট স্ট্রিমগুলো ষড়যন্ত্র তত্ত্ব, কিউঅ্যাননদের পরিকল্পনা, ইহুদী বিদ্বেষ আর এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি সমর্থনে পরিপূর্ণ। সাইটগুলোতে কে আসল আর কে একটি যান্ত্রিক 'বট' সেটি বোঝা খুবই কঠিন। কিছু কিছু পোস্ট খুবই ঘৃণাপূর্ণ এবং আপত্তিজনক। আর অনেকেই ইতিহাস কিংবা বর্তমান দিনের বস্তুনিষ্ঠ তথ্য উপেক্ষা করে সহিংসতা ছড়াচ্ছেন। অনেক পোস্টদাতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের সত্যিকার অনুসারী, যারা মনে করেন যে তারই এখনও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকা উচিত। যুক্তরাষ্ট্রে নভেম্বরের নির্বাচনের ফলাফলে সন্তুষ্ট হতে পারেননি এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের হুমকি বেড়েছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন মার্কিন নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত বিভিন্ন বিভাগের প্রধানেরা। +text: বাংলাদেশের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে রোহিঙ্গা নারীর কান্না। অনেকে যৌন নির্যাতনের পর হত্যার শিকার হয়েছেন বলে পালিয়ে আসা পরিবারগুলো বলছে। বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এসে এসব নারীরা লোকলজ্জার ভয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে পারছেন না বলে বলছেন স্থানীয় চিকিৎসকরা। হাজেরা বেগম উখিয়াতে পালিয়ে এসেছেন আজ তিন দিন। তিনি বলছিলেন, সেনাবাহিনী তাদের বাড়ি ঘেরাও করে। যারা পালিয়ে গিয়েছিল তারা প্রাণে বেঁচে গেছেন। আর যারা পালাতে পারেননি তারা হয় নিহত হয়েছে নয়তো তার মতোই যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তিনি বলছিলেন "নির্যাতনের পর আমার মতো অনেক নারীই চিকিৎসা নিতে চেয়েছে। বিশেষ করে যাতে করে গর্ভধারণের ঝুঁকি মুক্ত থাকা যায় সেজন্য ওষুধ পর্যন্ত চেয়েছে। কিন্তু পায়নি। আমি নির্যাতনের পরেও প্রাণে বেঁচে গিয়েছি। কিন্তু অনেক মেয়ে আছে যাদের ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।" বাংলাদেশে ২৫শে অগাস্টের পর যত মানুষ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন তার একটা বড় অংশ নারী এবং শিশু। অনেকেই ফেলে এসেছেন নিকটাত্মীয়দের। তারা বলছেন, পুরুষরা যেমন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে তেম���ি নারীরা হয়েছে যৌন নির্যাতনের শিকার। আরেকজন নারী তার এক শিশু সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে আসতে পেরেছেন। কিন্তু তার ১৫ বছরের মেয়েকে হারিয়ে ফেলেছেন। তিনি বলছিলেন, "আমার মনে হচ্ছে সেনাবাহিনীর হাতে সে ধরা পড়েছে এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আমি এখনো তার কোন খোঁজ পাইনি।" নারীরা কী নৃশংসভাবে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তার বর্ণনা দিচ্ছিলেন মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা মো. ইলিয়াস। তিনি বলছিলেন, তারা যখন পালিয়ে আসেন তখন একজন নারীকে তিনি ধর্ষিত হতে দেখেছেন। কোলে তার শিশু সন্তান ছিল। পরে ঐ নারীর অর্ধপোড়া মরদেহ তারা দেখতে পান আরো পাঁচটি মরদেহের সাথে। এদিকে, কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় যেসব নারী ও শিশু আশ্রয় নিয়েছে তাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য দেয়ার ব্যবস্থা নিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং সরকারের স্থানীয় পর্যায়ের চিকিৎসকরা। রোহিঙ্গা নারীদের ওপর যৌন নির্যাতন সম্পর্কে ডাক্তারের বক্তব্য তারা বলছেন, ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের বিষয়ে নারীরা মুখ খুলছেন না তাই তাদের জন্য প্রয়োজনীয় সেবা দেয়ার কাজটা কঠিন হয়ে পড়েছে। উখিয়ার পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলছিলেন, এখন পর্যন্ত তারা ১৮টি ঘটনার কথা জানতে পেরেছেন। তবে তিনি বলছিলেন এই সংখ্যা আরো বেশি। "গতকাল আমি ছয় ন মায়ের সাথে কথা বলেছি, তাদের কোলে সন্তান ছিল। তারা বলছেন, তারা বার্মার মিলিটারির হাতে 'জুলুমের শিকার' হয়েছে। তাদের চেহারায় বেদনা,কষ্ট, আর আতংকের ছাপ রয়েছে।" মি. আহমেদ বলছিলেন, "আমরা মাঠ পর্যায়ের যে তথ্য পাচ্ছি তাতে সংখ্যাটা কম নয়, যেটাতে আমাদের শঙ্কা-আশঙ্কার জায়গা তৈরি হচ্ছে।" স্বাস্থ্যকর্মীরা এখন ক্যাম্পে ক্যাম্পে যেয়ে খোঁজ নিচ্ছেন যাতে করে তাদের চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হয়। যৌন নির্যাতনের শিকার যেসব নারীদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে তাদের কাউন্সেলিং বা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন, তাদের যদি শনাক্ত না করা যায় তাহলে বড় ধরণের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পরতে পারেন তারা। উখিয়ার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবা নিচ্ছেন ধর্ষণের শিকার এক নারী। (ব্যক্তিগত গোপনীয়তার স্বার্থে এই প্রতিবেদনে নারীদের ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়েছে।) মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থী রোহিঙ্গা নারীদের একটা বড় অংশ বর্মী সেনাবাহিনীর হাতে যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। +text: ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিকদের গুলি করে হত্যার ঘটনা নতুন নয় 'সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে' সীমান্তে এমন হত্যাকাণ্ড ঘটছে বলে মত বিএনপির। সীমান্তে বাংলাদেশীদের হত্যার প্রতিবাদে সোমবার কেন্দ্রীয়সহ মহানগর ও জেলা কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল । সীমান্তে হত্যাকান্ডের জন্য বরাবরই "সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতিকে" দায়ী করে আসছে দলটি। এ প্রতিবাদ কর্মসূচিও ছিল পূর্বনির্ধারিত। তবে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভারত ভার্চুয়াল সামিটের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিবিসিকে বলেন, এ ধরনের সামিট হলে জনগণের প্রত্যাশা থাকে যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কার্যকর আলোচনা হবে। ভারতের প্রতি সরকারের নমনীয় মনোভাবের কারণে সীমান্ত হত্যা ঘটছে বলে দাবি করেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী । মি. আলমগীর বলেন, শুধু এ সামিটে নয়, গত দশ বছরে সীমান্ত হত্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়লেও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতেই এ কর্মসূচি বলে জানান তিনি। শুধুমাত্র রাজনৈতিক দল নয়, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বেসামরিক নাগরিকদের গুলি করে হত্যার বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে মানবাধিকার সংগঠনসহ নানা মহল। বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যেও এ নিয়ে রয়েছে ক্ষোভ। হানিফ বাংলাদেশীর এই অভিনব প্রতিবাদ সারাদেশে বেশ সাড়া ফেলেছিল । সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে এ বছরের অক্টোবর মাসে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে কুড়িগ্রাম সীমান্ত অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন হানিফ বাংলাদেশী। তার এই অভিনব প্রতিবাদে শামিল হয় নানা সংগঠনও। তিনি বিবিসিকে বলেন, গরু পাচার, মাদক বা অন্যান্য যেসব অভিযোগের দোহাই দিয়ে সীমান্তে বাংলাদেশীদের হত্যা করা হয়, ওই একই কাজে তো সীমানার ওপারের মানুষও নিশ্চয়ই জড়িত। একা একা তো আর কিছু পাচার করা যায় না। তাহলে কাঁটাতারের ওই পারে কখনো এমন ঘটনা ঘটেনা কেন? মহামারিতেও কমেনি সীমান্ত হত্যা করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এ বছর বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত যোগাযোগ বেশ কিছু মাস বন্ধ থাকলেও সীমান্তে হত্যার মত ঘটনা কমেনি। এ পরিসংখ্যান প্রকাশের পর সীমান্ত হত্যার বিষয়টি আবারো নতুন করে আলোচিত হচ্ছে । ভারত বারবার সীমান্তে নন-লেথাল বা প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র ব্যবহারের অঙ্গীকার করলেও তা রক্ষা করেনি। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র-এর হিসেবে গত ৫ বছরে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষাবাহিনী--বিএসএফ কমপক্ষে ১৫৩ জন বাংলাদেশী নাগরিককে গুলি করে হত্যা করেছে। সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ উপ-পরিচালক নীনা গোস্বামী বলেন, একটি প্রশিক্ষিত বাহিনীর সৈন্যরা কিন্তু চাইলেই এমনভাবে গুলি করতে পারে যাতে অপর ব্যক্তি মারা না যায়, কিন্তু তারা এমনভাবে গুলি করছে যাতে সাথে সাথে একজন নিরস্ত্র মানুষের মৃত্যু ঘটে--এটিই সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়। বাংলাদেশ-ভারত ভার্চুয়াল সামিটে কী হল? বাংলাদেশ ও ভারত পরস্পরকে বরাবরই 'বন্ধু রাষ্ট্র' হিসেবে অভিহিত করে আসছে। গত ১৭ই ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভারত ভার্চুয়াল সামিটেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। ওই সামিটে গণভবন থেকে শেখ হাসিনা ও দিল্লি থেকে নরেন্দ্র মোদি বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বৈঠকের বিষয় অবহিত করতে সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি জানান, দুই দেশের সীমান্তে হত্যা বন্ধের বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একমত হয়েছেন। সীমান্তে হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে অঙ্গীকার করেছেন। সীমান্তে বিএসএফ মারণাস্ত্র ব্যবহার করবে না বলেও তিনি অঙ্গীকার করেছেন। ভার্চুয়াল বৈঠকের আগে দুই দেশের মধ্যে সাতটি সমঝোতা স্মারক (এমইও) স্বাক্ষর হয় । তবে, এর দুই দিন পরেই আরেকটি সংবাদ সম্মেলনে মি. মোমেন বলেন, 'সীমান্তে যাতে একজনও মারা না যায়, সে ব্যাপারে ভারত অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা হচ্ছে, সীমান্ত হত্যা ঘটছে। তাই আমরা উদ্বিগ্ন।' বিজিবি মহাপরিচালকের বক্তব্য নিয়ে সমালোচনা সীমান্ত হত্যা বন্ধে কূটনৈতিকভাবে এবং বিজিবির পক্ষ থেকে চেষ্টা চলছে বলে জানান বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ সাফিনুল ইসলাম। রোববার বিজিবি দিবস ২০২০ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'সীমান্তবর্তী জনগণকে শিক্ষাদীক্ষায় এবং অর্থনৈতিকভাবে যদি স্বাবলম্বী করতে পারি, তাহলেই সীমান্ত হত্যা কমে যাবে।' বাংলাদেশ-ভারত সীমানার ২১১৬ মাইল জুড়ে ৩ মিটার উঁচু কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে ভারত। তাঁর এই বক্তব্যে সমালোচনার ঝড় ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ায়। মানবাধিকার কর্ম��� নীনা গোস্বামী এমন বক্তব্যকে সরকারের নমনীয় পররাষ্ট্রনীতির বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করেন। তিনি বলেন, এত বড় সীমান্তের বিপুল জনগোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী করতে তো অনেক সময় লাগবে, ততদিন কি তাহলে সীমান্তে হত্যা চলতেই থাকবে? সীমান্তে হত্যা থামছে না কেন? ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত কিংবা ভারত-চীন সীমান্তে দুই দেশের বৈরি সম্পর্কের কারণে চরম উত্তেজনা থাকলেও বেসামরিক লোকের প্রাণহানির ঘটনা সেখানে কদাচিৎ ঘটে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের মত এমন বিপদজনক সীমান্ত পুরো পৃথিবীতে বিরল - যেখানে দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে কোন যুদ্ধ বা সংঘাত ছাড়াই এক দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর হাতে অন্য দেশের এত বেসামরিক লোক প্রতি বছর প্রাণ হারায় । অ্যাকটিভিস্ট হানিফ বাংলাদেশী বলেন, আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো মনে করে ক্ষমতায় থাকার জন্য ভারতের সাথে সুসম্পর্ক থাকা জরুরি। এইজন্যই সরকার নিজ দেশের নাগরিকদের এমন চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় নিশ্চুপ । সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে ভারত আইন ও সালিশ কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ উপ-পরিচালক নীনা গোস্বামী মনে করেন, শুধু দুই দেশের সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আন্তরিকতা থাকলে চলবে না, ভারতকে বুঝতে হবে তাদের আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ তাদের সামরিক বাহিনীর কর্মকাণ্ডেও যেন প্রতিফলিত হয় । দীর্ঘদিন ধরেই ভারত ও বাংলাদেশের উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের বৈঠক কিংবা সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর বৈঠকে বারবার সীমান্তে নন লেথাল বা প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। জরুরি মুহূর্ত ছাড়া এমন অস্ত্র ব্যবহার না করার অঙ্গীকারও করেছে বিএসএফ। এসব প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও সীমান্তে বেসামরিক বাংলাদেশী হত্যার ঘটনা বারবার ঘটলেও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো জোরালো প্রতিবাদ বা পদক্ষেপ- কোনটিই দেখা যায়নি। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ২০২০ সালের ১১ মাসে প্রাণ হারিয়েছেন মোট ৪১ জন বাংলাদেশী বেসামরিক নাগরিক। +text: উড়াল সড়কের মতো মহাসড়কগুলোয় চলাচলের ক্ষেত্রে টোল আদায়ের কথা ভাবছে সরকার সেতুর পাশাপাশি মহাসড়ক থেকে টোল আদায় করার জন্য একনেক সভায় নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কেবলমাত্র সেতু পারাপার আর কোন কোন উড়াল সড়ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে টোল আদায়ের ব্যবস্থা চালু র��়েছে। নতুন এই ব্যবস্থা কেন চালু করতে চাইছে সরকার? বাংলাদেশের পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান বলছিলেন, ''মহাসড়ক বলতে আমরা জাতীয় মহাসড়কগুলোকে বুঝিয়েছি, ছোট সড়কগুলো নয়। যেমন ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-ময়মনসিংহ ইত্যাদি সড়ক বুঝিয়েছি। যেগুলো আন্তঃজেলা বড় সড়ক।'' ''এতদিন আমরা শুধু কয়েকটি নির্বাচিত সেতুতে টোল নিতাম। কিন্তু রাস্তাঘাট মেরামতে আমাদের বহু অর্থের প্রয়োজন হয়। তাই টোল নিয়ে যদি আলাদা একটি ডেডিকেটেড তহবিলে রাখা যায় এবং সেই টাকাটা রাস্তা মেরামতে ব্যয় করা হবে, এটাই হচ্ছে আইডিয়া।'' বলছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। তিনি জানান, "প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই আইডিয়াটার কথা জানিয়েছেন। এখন সেটা আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে।" আরো পড়ুন: মেগা প্রকল্প কি ঢাকার সড়কে বিড়ম্বনার অন্যতম কারণ? বাংলাদেশে প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইনে যা আছে কতটা বিপজ্জনক সড়কে চলাচল করছেন আপনি? মহাসড়ক মেরামতে বিশেষ একটি টোল তহবিল গঠন করতে চায় সরকার টোল কি সবাইকে দিতে হবে? মহাসড়কে যে টোল দেয়ার কথা বলা হচ্ছে, সেটি কি যাত্রীবাহী বাস, ছোট গাড়িগুলোকেও দিতে হবে নাকি শুধুমাত্র পণ্যবাহী ট্রাকের ওপর প্রযোজ্য হবে? এ বিষয়ে এখনো পরিষ্কার করে কিছু বলেনি বাংলাদেশের সরকার। পরিকল্পনামন্ত্রী মি. মান্নান বলছেন, ''যারা সড়ক ব্যবহার করেন, যাওয়া-আসা করবেন, তারাই এই টোল দেবেন। যেভাবে অন্যান্য দেশে আছে, সেভাবেই এখানেও ব্যবস্থা করা হবে। সেটা স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা হতে পারে।'' বিষয়টি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে তিনি জানান। পুরো কার্যক্রম শুরু হলে তখন এই বিষয়গুলো পরিষ্কার হবে। তখন গাড়ি প্রতি টোলের হারটিও নির্ধারণ করা হবে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: প্রধানমন্ত্রীকে হারিয়ে ব্রিটিশ সংসদের নিয়ন্ত্রণ এমপিদের চীনাদের গণহত্যা থেকে রক্ষা করেছিলেন যে ডেনিশ ডেঙ্গুর প্রকোপ কি কমতে শুরু করেছে? আলসেমি দূর করার আটটি উপায় ঢাকার একটি বাস টার্মিনাল কবে থেকে চালু হবে? নতুন এই উদ্যোগ চালুর দিনক্ষণ জানায়নি সরকার। বিষয়টি এখনো একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী মি. মান্নান। ''আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবো, যখন সব ঠিক হয়ে যাবে, তখন হয়তো নির্বাহী আদেশে এটা পরিষ্কার করা হবে।'' তিনি জানান, যে একনেক সভায় প্���ধানমন্ত্রী মহাসড়কে টোল আদায় করার নির্দেশনা দেন, সেখানেও এই বিষয়টি এজেন্ডাভুক্ত ছিল না। ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দেয়ার পর থেকেই এটি নিয়ে বাংলাদেশে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলছেন, ''অনেক দেশেই সড়কে একটি টোল নেয়া হয়। সেটা আমরা দেখবো, বুঝবো। সেভাবেই আমাদের এখানেও ঠিক করা হবে। একটা নির্দিষ্ট দূরত্বের পর পর হয়তো টোল স্টেশনগুলো হবে।'' টোল ব্যবস্থা নিয়ে সড়ক মালিকদের রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া কতটা কার্যকর হবে মহাসড়কে টোল ব্যবস্থা? বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদ এবং বিশ্লেষকরা বলছেন, টাকা আদায় বা টাকার সংস্থান করার চেয়ে বরং বেশি জরুরি মহাসড়ক রক্ষণাবেক্ষণে অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা। বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্ট্যাডিজের অর্থনীতিবিদ ড. জায়েদ বখত বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ''মহাসড়কে টোলের পদ্ধতি নতুন না, অনেক দেশে করা হয়। আমাদের দেশেও ব্রিজে এগুলো আছে, উড়াল সড়কে আছে।'' ''যেসব হাইওয়ে বাণিজ্যিকভাবে বেশি ব্যবহৃত হয়, সেটায় টোল হতে পারে। এর ভালোমন্দ দুইটি দিকই আছে।" "যেমন একদিকে সাধারণভাবে মানুষের কস্ট অফ লিভিং [জীবনযাত্রার খরচ] বাড়বে। কারণ যানবাহনের খরচ বাড়লে ভাড়াও বাড়বে। আবার যেসব সড়ক বেশি ব্যবহৃত হয়, সেটা মেরামতের দরকারও বেশি, টোলের আয় থেকে সেটি ব্যয় নির্বাহ হবে।'' কিন্তু তিনি মনে করেন, তহবিল গঠনের চেয়ে বরং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার ওপর সরকারের বেশি নজর দেয়া উচিত। ''তবে এটা সরকারের রাজস্ব আয়ের ভালো উৎস হতে পারে। কিন্তু সেটার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। কারণ সরকারের টাকার অভাবে মেরামত হচ্ছে না তা নয়, বরং আসল সমস্যা হচ্ছে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাব।" "টাকার ঠিকমতো ব্যবহার হচ্ছে না, রাস্তাঘাটের ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ হয় না।'' তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ''একজন গার্মেন্ট ব্যবসায়ী দ্রুত পণ্য পাঠানোর সুযোগ পেলে হয়তো তিনি অতিরিক্ত টাকাও খরচ করবেন। কিন্তু টাকা খরচ করেও তার কোন সুবিধা হলো না, তাহলে তো কোন মানে হলো না।'' বিশ্লেষকরা বলছেন, তহবিল তৈরির চেয়ে সড়ক ব্যবস্থাপনায় জোর দেয়া বেশি জরুরি কী বলছেন বাংলাদেশের পরিবহন মালিকরা? এ নিয়ে বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন মালিকদের রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খোন্দকার এনায়েত উল্লাহ বিবিসি বাংলাকে বলছেন, বিশ্বের অনেক দেশে এইরকম ব্যবস্থা আছে, বাংলাদেশেও যদি সরকার করতে চায় ভালো। "টোল দিতে আমাদের আপত্তি নেই, তবে ভালো সড়কের ব্যাপারটিও নিশ্চিত করতে হবে।" ''রাস্তা যদি ভালো থাকে, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা থাকে, আমাদের গাড়ি যদি দ্রুত চলাচল করতে পারে, তাহলে কিছুটা টোল দিতে হলেও আমাদের আপত্তি থাকবে না।'' এসোসিয়েশন অফ বাস কোম্পানিজের সভাপতি খোন্দকার রফিকুল হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলছেন, সড়কগুলো যুগোপযোগী করা হচ্ছে না, আধুনিক করা হচ্ছে না, দুর্ঘটনা ঠেকাতে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। ফলে এই টোল বসানোর যে কথা বলা হচ্ছে, তাতে কতটা সুফল আসবে, তা নিয়ে সংশয় আছে। ''আর যে টোলই বসানো হোক না কেন, সেটা শেষ পর্যন্ত তো জনগণকেই দিতে হবে। বাস-ট্রাকের ভাড়া বাড়বে, ফলে জনগণের ওপর, ব্যবসায়ীদের ওপর চাপ আরো বাড়বে,'' তিনি বলছেন। বাংলাদেশের মহাসড়কগুলোয় গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে টোল দেবার নিয়ম চালু করার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশের সরকার। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেকের সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। +text: রুশ নারীদের সম্পর্কে অবমাননামূলক প্রচারণার অভিযোগ দেশটির গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে বিজ্ঞপ্তিটিতে বলা হয়েছিল কোনো রাশিয়ান নারী বিশ্বকাপে খেলা কোনো খেলোয়াড়ের মাধ্যমে গর্ভবতী হতে পারলে তাকে ৩০ লাখ রুবল (৩৬ হাজার পাউন্ড; ৪৭ হাজার ডলার) ও সারাজীবনের জন্য বিনামূল্যে হুপার বার্গার দেয়া হবে। বিজ্ঞাপনটিতে বলা হয়, "যে নারী ফুটবলারের জিন শরীরে বহন করবে, সে রাশিয়ান দলের ভবিষ্যত প্রজন্মের সাফল্যের প্রবর্তক হবে।" এ বিজ্ঞাপন দেয়ার পর রাশিয়ায় ব্যাপক সমালোচনা ও ক্ষোভ তৈরি হয়। বার্গার কিং বাধ্য হয় বিজ্ঞাপণটি সরিয়ে নিতে। সামাজিক মাধ্যম টেলিগ্রামে একটি নারীবাদী সংস্থা মন্তব্য করে যে, "আমাদের সমাজে নারীদের অবস্থানের প্রতিফলন এই বিজ্ঞাপন।" বিজ্ঞাপন ও মিডিয়ায় রুশ নারীদের যৌন শিকারী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। ক্রেমলিন সমর্থিত গণমাধ্যমের লেখায় রুশ নারীরা কিভাবে 'বিদেশীদের প্রলোভন' দেখাতে পারেন তা বিশেষভাবে চিত্রায়ন করা হয়। রুশ নারীরা কীভাবে বিদেশীদের প্রলুব্ধ করতে পারেন তা নিয়ে ব্যাপক বিশ্লেষণও করা হয় বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় । আরো পড়ুন: বিশ্বকাপের সময় বিদেশি পুরুষদের সাথে সেক্স না করার আহবান বিশ্বকাপ ২���১৮: রাশিয়ার জন্মহার বাড়াবে ফুটবল? রাশিয়ার একটি সামাজিক মাধ্যমে এই বিজ্ঞাপণটি দেয়া হয়েছিল যেখানে অন্তস্বত্তা হলে ফ্রি বার্গার ও অর্থ পুরষ্কার দেয়ার কথা বলা হয় রাশিয়ার লিঙ্গ বৈষম্য এই ধারার আলোচনা কিন্তু কমিউনিস্ট পরবর্তী রাশিয়ায় খুব একটা নতুন নয়। নারীবাদী মতবাদ রাশিয়ায় খুব একটা শোন যায় না। লিঙ্গ বৈষম্য নিয়ে রাশিয়ান টিভির অনুষ্ঠানগুলো গতানুগতিকের বাইরে খুব একটা সরব নয়। এমনকি কোনো অনুষ্ঠান যদি নারীবাদ বিষয়ে একটু সোচ্চারও হয়, সেটিকে রাশিয়ান ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে পশ্চিমা ষড়যন্ত্র বলে সমালোচনা করা হয়। এতকিছুর পরও এসবের বিরুদ্ধে রুশ নারীদের পক্ষ থেকে খুব একটা প্রতিবাদ দেখা যায় না। নারী অধিকার কর্মী অ্যালিওনা পোপোভা বিবিসিকে বলেন যে রুশ নারীদের মধ্যে দৃঢ়তার অভাব রয়েছে। তিনি বলেন, "পুরুষরা যখন নারীকে দেহসর্বস্ব উপাধি দেয়, যৌন হয়রানির পক্ষে অজুহাত খোঁজে আর পারিবারিক সহিংসতার জন্যও নারীকেই দোষারোপ করে, তখন নারীরাও বিশ্বাস করা শুরু করে যে সেগুলোই আসলে সত্যি এবং এটিই নিয়ম।" মিজ পোপোভা সাম্প্রতিক এক যৌন হয়রানির ঘটনার উদাহরণ দেন, যেটিতে রুশ সাংসদ লিওনিড স্লাটস্কি জড়িত ছিলেন। মি. স্লাটস্কির নামে একাধিক সাংবাদিক যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন। তার বিরুদ্ধে জনরোষ তৈরী হলেও সংসদের নৈতিকতা সংশ্লিষ্ট কমিশনের তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে তিনি স্ব-পদে বহাল থাকেন। অ্যালিওনা পোপোভা অভিযোগ করেন যে রাশিয়ার আইন 'রুশ নারীদের ভোগ্যপণ্য হিসেবে দেখার' ব্যাপারে অনুপ্রাণিত করে বিদেশীদের। যৌন হয়রানি সংক্রান্ত কোনো আইন এই মুহুর্তে রাশিয়ায় কার্যকর নেই। তবে স্লাটস্কি কেলেঙ্কারির পর এই বিষয়ে আইন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। মিজ পোপোভা বলেন, "রাশিয়ার গণমাধ্যম নারীদের সম্পর্কে ভুল ধারণা দেয়ার জন্য মুখিয়ে থাকে। মানুষের কাছে নারীদের নতুন ভাবমূর্তি তৈরী করার জন্য লড়তে হবে আমাদের।" বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: বিশ্বকাপে ফ্লার্ট করা নিয়ে বিপাকে আর্জেন্টিনা অনলাইনে মেসি-রোনাল্ডো ভক্তদের 'বিদ্রূপ-যুদ্ধ' বিশ্বকাপের ইতিহাস বদলে দিতে পারতো ভিএআর? বিশ্বকাপ ২০১৮: ইতিহাসের বিচারে কে চ্যাম্পিয়ন হতে পারে ফাস্ট ফুড চেইন বার্গার কিং'য়ের রাশিয়ান বিভাগ রুশ নারীদের পুরষ্কার দেয়ার একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আবার সেটির ��ন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছে। +text: কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের আমির আহমদ শফী (বামে)। চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে শুক্রবার এক মাহফিলে মেয়েদেরকে স্কুল-কলেজে না দিতে এবং দিলেও সর্বোচ্চ ক্লাস ফোর বা ফাইভ পর্যন্ত পড়ানোর জন্য উপস্থিত মানুষের কাছে 'ওয়াদা' চান মি. শফী। তার এই মন্তব্য সামাজিক মাধ্যম ও সংবাদ মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন তার এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তবে তার মন্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থিত করা হয়েছে বলে পরে গণমাধ্যমে এক বিবৃতি দেন মি. শফী। বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেন যে, তার বক্তব্যে মেয়েদের শিক্ষার বিরোধিতা নয়, ইসলামের মৌলিক বিধান মেনে চলার ব্যাপারে তাদের সতর্ক হতে তাগিদ দিয়েছেন তিনি। ইসলাম ধর্মে নির্দেশিত নীতিমালা অনুসারে নারীদের পর্দার বিধানের পক্ষে এবং সহশিক্ষার বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছেন বলে বিবৃতিতে বলেছেন মি. শফী। "কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের পড়াতে চাইলে বোরকা পরতে হবে এবং তাদের শিক্ষকও হতে হবে নারী," তিনি বলেন। মি. শফী এই মন্তব্য করার পর এর নানামুখী আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয় সামাজিক মাধ্যমে। প্রগতিশীল চিন্তাধারার অধিকাংশ মানুষ এই মন্তব্যের বিরোধিতা করেন এবং নিন্দা জানান। বাংলাদেশে শিক্ষাঙ্গণে নারীদের অংশগ্রহণের হার উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি যখন কওমী মাদ্রাসাগুলোতেও মেয়েদের পড়ার হার বাড়ছে, তখন কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠনের শীর্ষ নেতার এমন মন্তব্য নারী শিক্ষার অগ্রগতিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন অনেকে। কিন্তু, এ বিষয়ে ফেসবুকে মতামত জানতে চাওয়া হলে অধিকাংশ নারীর কাছ থেকেই পাওয়া যায় অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া। আরো পড়ুন: বাংলাদেশে কওমী মাদ্রাসায় পড়ছে কারা? 'অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হতে' বললেন হাসিনা ও শফী ‘শোকরানা মাহফিল’ নিয়ে যত আলোচনা ফেসবুকে নারীদের কী প্রতিক্রিয়া? উচ্চশিক্ষার জন্য কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হলে বোরকা পড়তে হবে - আহমেদ শফী'র এই মন্তব্য সম্পর্কে বিবিসি বাংলার ফেসবুক পাতায় মতামত জানতে চাওয়া হলে মন্তব্যের সমর্থন করে কমেন্ট পোস্ট করেন অধিকাংশ নারী। আহমদ শফী'র মন্তব্যকে সমর্থন করা অধিকাংশ নারীই সমর্থনের কারণ হিসেবে ইসলামের ধর্মগ্রন্থ কোরানে বর্ণিত বিধান অনুযায���ী পোশাক পরার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েছেন। রাবেয়া সুলতানা নামে একজন লিখেছেন, "এটা শফী আহমদের কথা না, এটা কোরানের কথা, আপনি যদি কোরানকে ভালবাসেন ও আল্লাহকে ভয় করেন তাহলে ওনার কথা ঠিক আছে, এটা মানা না মানা আপনার ব্যাপার।" পোস্টে মি. শফী'র মন্তব্যকে সমর্থন করা অধিকাংশ নারী একই ধরণের কারণ দেখিয়েছেন। আবার অনেক নারী মি. শফীর মন্তব্যকে সমর্থন করলেও বোরকা পরা বা না পরার সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে একজন নারীর ব্যক্তিগত পছন্দকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। ফারহা মন্তব্য করেছেন, "খারাপ বলেন নি সত্যি বলতে গেলে। কিন্তু বিষয়টা হচ্ছে কারো উপর কিছু চাপিয়ে দেয়ার অধিকার নেই ইসলাম ধর্মে কারো, আমাদের নবীও তা করেন নি।" বোরকা পরা বা পর্দা করার ক্ষেত্রে নারীর নিজের সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিয়েছেন অনেক নারীই। এদের প্রায় সবাই পর্দা করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তাহমিনা পাভিন নিপু লিখেছেন, "মেয়েদেরকে পর্দার ভিতরে থাকতে হবে এটাই বড় কথা। তবে জোর করে কারো উপরে কিছু চাপিয়ে না দিয়ে আগে এদেরকে বুঝতে হবে যে পর্দাটা আসলে কি, পর্দা কেন করবো। আর এরা যখন এটার গুরুত্বটা বুঝতে পারতে তখন তারা নিজে থেকেই পর্দা করবে।" মেয়েরা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে চাইলে তাদের বোরকা পরতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আহমদ শফী। কমেন্ট করে আহমদ শফী'র মন্তব্যের ঘোর বিরোধিতাও করেছেন কয়েকজন নারী, তবে তুলনামূলকভাবে তাদের সংখ্যাটা ছিল নগণ্যই। মৌমিতা আলো লিখেছেন, "যে দেশের পুরুষের নিজস্ব কিছু নেই, এরা নিয়ন্ত্রিত হয় নারীর পোশাক দ্বারা। কে কি পরবে আর কি পরবে না সেটা তার নিজস্ব ব্যাপার।" তবে ধর্মীয় নীতিমালার বিষয়টিকে গৌণ হিসেবে উল্লেখ করে সামাজিক প্রেক্ষাপটের বিবেচনায় বোরকা পরা বা পর্দা করা প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন অনেকে। জাহান সোনিয়া নামে একজন মন্তব্য করেন, "এখনকার সময় কিছু কিছু মেয়েরা এমন সব জামা পড়ে দেখতে লজ্জা করে। তাই বোরখা পরলে অন্তত ইভটিজিং'র শিকার হবে না।" পোস্টে পুরুষ মন্তব্যকারীদের সিংহভাগও মি. শফী'র দৃষ্টিভঙ্গির সমর্থন করেই মন্তব্য করেন। নারীরা বোরকা পরলে বা পর্দা করলে ধর্ষণের ঘটনার হার কমে যাবে বলে ধারণা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। আরো পড়তে পারেন: হিজাব ফ্যাশন সংশোধিত মজুরি নিয়ে আপত্তি কোথায় শ্রমিকদের? শরণার্থী, অভিবাসী, আশ্রয় প্রার্থী - দেশ ত্যাগ করা মানুষের ভিন্ন নামকরণ কেন? কী নিয়ে সংলাপ জানতে চান ড. কামাল হোসেন বাংলাদেশে কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের আমির আহমেদ শফী তার সাম্প্রতিক এক বক্তব্যে মেয়েদের শিক্ষা প্রসঙ্গে এক মন্তব্য করে যেমন ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন, তেমনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমর্থনও পাচ্ছেন অনেকের। +text: ফেসবুকে যেসব তৃতীয়পক্ষের অ্যাপে ঢুকে আমরা নানা মজার খেলা বা কুইজে অংশ নিচ্ছি, তাতে আমরা নিজেদের সম্পর্কে নানা ধরনের তথ্য তাদের দিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু হঠাৎ ফেসবুকে পেয়ে গেলেন মজার এক অ্যাপ 'টেন ইয়ার চ্যালেঞ্জ'। সেটি দিয়ে খুব সহজেই এখনকার সাথে সেই সময়কার নিজের চেহারার তুলনা করে নিলেন। বছরের শুরুতেই মাত্র একটা ক্লিক আর অল্প কিছু তথ্য দিয়ে ফেসবুক ঘাটতে গিয়ে জেনে গেলেন এ বছরের রাশিফল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেমন যাবে প্রেম অথবা পেশাগত জীবনে এমন ভবিষ্যতবাণী অথবা কোন নায়ক বা নায়িকার সাথে আপনার চেহারার মিল রয়েছে তা জানতে গিয়ে আসলে ফেসবুক ও তার তৃতীয়পক্ষের পার্টনারদের আমরা অনেক তথ্য দিয়ে দিচ্ছি। আরো পড়ুন: নিজের ফেসবুক একাউন্ট নিরাপদ রাখবেন যেভাবে ফেসবুকের ভুল স্বীকার করলেন জাকারবার্গ মার্কিন সিনেটরদের তোপের মুখে জাকারবার্গ ইন্টারনেটে কীভাবে নিজের গোপনীয়তা রক্ষা করবেন জনপ্রিয় তারকারাও অংশ নিয়েছেন টেন ইয়ার চ্যালেঞ্জে। কীভাবে নিজের তথ্য দিচ্ছেন? প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ জাকারিয়া স্বপন বলছেন, ফেসবুকে যেসব তৃতীয়পক্ষের অ্যাপে ঢুকে আমরা নানা মজার খেলা বা কুইজে অংশ নিচ্ছি তাতে আমরা নিজেদের সম্পর্কে নিজেরাই নানা ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তাদের দিয়ে দিচ্ছি। তিনি বলছেন, "যেমন ধরুন টেন ইয়ার চ্যালেঞ্জ, তাতে আমি ছবি দিয়েছি। এর মাধ্যমে ঐ অ্যাপকে ফেসিয়াল রিকগনিশনের সুযোগ দিয়ে দিয়েছি।" "কিন্তু অপরিচিত কেউ আপনার ছবি কোথাও তুললে ব্যক্তিগত বিষয় লঙ্ঘন হচ্ছে বলে আমরা তাতে বিরক্ত হই। অথচ এখানে নিজেই যত্ন করে ছবি দিয়ে দিয়েছেন।" টেন ইয়ার চ্যালেঞ্জ কাছাকাছি সময়ে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে। যাতে সকল দেশের মানুষজনতো বটেই জনপ্রিয় তারকারাও অংশ নিয়েছেন। এমনকি পরিবেশবিদ বা মানবাধিকার কর্মীরা পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিতে এতে অংশ নিয়েছেন। মি. স্বপন বলছেন, কিছু অ্যাপ রীতিমতো বিপজ্জনক। যেমন ধরুন রাশিফল বিষয়�� অ্যাপ যেখানে নিজের জন্ম তারিখ দিচ্ছেন আপনি। জন্ম তারিখ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টেও ব্যবহৃত হচ্ছে। ইমেইল অ্যাড্রেস চলে যাচ্ছে। ফেসবুককে প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করে আরও অনেক সফটওয়ার কোম্পানি। ব্যক্তি সম্পর্কে ডাটাবেজ তৈরি হয়ে যাচ্ছে? অনেক সময়ে অনেক কুইজে অংশ নিচ্ছেন ব্যবহারকারীরা। তাতে আপনার পছন্দ, অপছন্দ, আপনার পেশা, নিয়মিত চেক ইনের মাধ্যমে কোন ধরনের এলাকায় আপনি যাচ্ছেন, কোন রেস্টুরেন্টে কেমন খাবার খান এমনকি আপনার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি কি, কাদের আপনি ঘৃণা করেন - সেসব তথ্য সেখানে নিজেই দিচ্ছেন। কয়েকটি লাইক বা খানিক বিনোদনের জন্য আপনি কি কোন নজরদারির অংশ হয়ে উঠছেন? - এমন প্রশ্ন বহুদিনের। মি. স্বপন বলছেন, "বহু অ্যাপ নানা এজেন্সির প্ল্যান্ট করা এটা অনেকবার প্রমাণিত হয়েছে। আপনি খেলা ভাবছেন কিন্তু সে আপনার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে নিলো।" আপনি কেমন লোক তা যাচাই করতে চাইলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেই অনেক ক্ষেত্রে যথেষ্ট। এমনকি আপনাকে টার্গেট করে নির্দিষ্ট বিজ্ঞাপন দিয়ে নির্বাচনে আপনার ভোট দেয়ার প্রবণতা বদলে দেয়া বা কোন পণ্য কেনার ব্যাপারে ধীরে ধীরে আগ্রহী করে তোলা এমন অনেক কিছুর নমুনা ইদানীং পাওয়া যায়। কারোর কাছে ব্যবহারকারীর তথ্য দেয়ার বিষয়টি সবসময় অস্বীকার করে আসছে ফেসবুক। কীভাবে কাজ করে এসব তৃতীয়পক্ষের অ্যাপ জাকারিয়া স্বপন বলছেন, ফেসবুককে প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করে আরও অনেক সফটওয়ার কোম্পানি। তাদের অ্যাপ্লিকেশনগুলো ফেসবুক সংযুক্ত হওয়ার অনুমতি দেয়। ফেসবুকের কাছ থেকে সে যেমন আপনার কিছু তথ্য নিয়ে নেয় তেমনটি আপনি নিজেও কিছু তথ্য তাদের দিচ্ছেন। ফেসবুক এবং দুপক্ষই এখানে অর্থ উপার্জন করে। যেমন ধরুন অ্যাপগুলো যখন এভাবে অর্থ উপার্জন করে তখন সে ফেসবুককেও তা দিয়ে থাকে। যদিও ফেসবুক 'টেন ইয়ার চ্যালেঞ্জ' বা অন্য কারোর কাছে ব্যবহারকারীর তথ্য দেয়ার বিষয়টি সবসময় অস্বীকার করে আসছে। সে নিয়ে বহুবার বক্তব্য দিয়েছেন এর প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। অন্যান্য খবর: প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি কিভাবে দেখছেন ডাক্তাররা নেপালের রিপোর্টে দায়ী ইউএস বাংলার পাইলট ক্যান্সারের রোগীকে যেসব কথা বলা উচিত নয় বেওয়ারিশ লাশের কেন পরিচয় মেলে না দশ বছর আগে আপনি দেখতে কেমন ছিলেন? পুরনো অ্যালবাম ঘেঁটে সেটি ���ানতে হয়ত বেশ সময় লাগবে। +text: মীনারা বেগম: "সাতজনের পরিবারের তিনজনের নাম এসেছে, বাকি চারজনের নাম নেই।" ছয় জনের পরিবার মি. সূত্রধরের। চারজনের নাম আজ তিনি খুঁজে পেয়েছেন জাতীয় নাগরিক পঞ্জীর চূড়ান্ত খসড়ায়। এক ছেলে আর তার নিজের নামও নেই। অনেকটা একই কাহিনী পাশের জেলা হাইলাকান্দির বন্দুকমারা এলাকার বাসিন্দা মীনারা বেগমের। তিনি জানালেন, "আমার শ্বশুর আর বাবার দুজনেরই নামই ছিল ১৯৫১ সালের নাগরিক পঞ্জীতে। বাকি যা কাগজ দরকার, সব দিয়েছিলাম। কিন্তু সাতজনের পরিবারের তিনজনের নাম এসেছে, বাকি চারজনের নাম নেই।" "এক মেয়ের আর এক ছেলের নাম নেই, আমার নিজের নামও নেই। কিন্তু অন্য ছেলে মেয়েদের নাম রয়েছে," বলেন তিনি। সম্পূর্ণ খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ৪০ লাখ ৭ হাজার ৭০৮ জনের নাম। যেসব মানুষের নাম বাদ পড়েছে, তাদের সিংহভাগই বাংলাভাষী মুসলমান বলে মনে করা হচ্ছে, যদিও এ নিয়ে নির্দিষ্ট তথ্য এখনও দেওয়া হয় নি। বাদ পড়েছে অনেক বাঙালী হিন্দুর নামও। আরো পড়তে পারেন: আসামের ৪০ লাখ অবৈধ বিদেশি এখন কোথায় যাবে? আসামে নাগরিক তালিকা থেকে বাদ ৪০ লাখ মানুষ তালিকায় পরিবারের সবার নাম খুঁজে পাননি হাবিবুর রহমান লস্কর। অন্যদিকে শিলচর শহরের মধুরবন্দ এলাকার মইনুল হাসানের মতো মানুষ, যারা পরিবারের সব সদস্যের নামই তালিকায় খুঁজে পেয়েছেন, তাদের সংখ্যাটা দুই কোটি ৮৯ লক্ষ। মি. হাসানের সঙ্গে যে জায়গায় কথা হচ্ছিল, সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিলেন যুবক হাবিবুর রহমান লস্কর। তিনি আবার পরিবারের সকলের নাম খুঁজে পেলেন না। যেমন কাছাড়ের পাশের জেলা হাইলাকান্দির বাঁশধারের বাসিন্দা উজ্জ্বল রায়ও পরিবারের সকলের নাম খুঁজে পান নি। তারা সকলেই বৈধ ভারতীয় নাগরিকত্বের স্বীকৃতি পেয়েছেন সোমবার সকালে, যখন আসামের রাজধানী গুয়াহাটিতে ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেল শৈলেশ প্রকাশ করলেন জাতীয় নাগরিক পঞ্জীর চূড়ান্ত খসড়া তালিকা। মি. শৈলেশ আসাম ক্যাডারেরই অফিসার। তিনি আগে ছিলেন আসামের স্বরাষ্ট্র সচিব। নামের সঙ্গে কোনও পদবী ব্যবহার করেন না এই শীর্ষ কর্মকর্তা। তিনি জানিয়েছেন যে ৩ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষের আবেদন যাচাই বাছাইয়ের পরে দুই কোটি ৮৯ লক্ষ মানুষকে বৈধ ভারতীয় নাগরিকের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। যদিও কর্তৃপক্ষ বলছেন, যাদের নাম বাদ পড়েছে, তাদের এখনই অবৈধ বিদেশী বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে না, তারা নিজেদের দাবীর স্বপক্ষে প্রমাণ পেশ করার জন্যে আরও একবার সুযোগ পাবেন। কাছাড় জেলা ছাড়িয়ে গিয়েছিলাম হাইলাকান্দির বন্দুকমারায়। একটি স্কুলে বেশ ভিড় করে নানা গ্রামের নারী পুরুষ দেখতে এসেছেন জাতীয় নাগরিক পঞ্জীতে নিজেদের নাম আছে কী না। সেখানেই কথা হচ্ছিল বাঁশধার গ্রামের উরজ্জ্ব রায়ের সঙ্গে। তিনি বলছিলেন, পরিবারের ১৩ জন আবেদন করেছিলেন নাগরিকত্বের জন্য, ২ জন তালিকায় ঠাঁই পান নি। "কেন যে দু'জনের নাম বাদ গেল, সেটাই তো বুঝতে পারছি না। একই নথি জমা দিলাম সবার জন্য, একজনের নাম থাকে, অন্যজনের নাম থাকে না! আবার আসতে বলছে যে কী কারণে নাম বাদ গেল, সেটা জানার জন্য," বলছিলেন মি. রায়। নিরঞ্জন সূত্রধর (বামে): তালিকায় তার এক ছেলের নাম আছে, অন্যজন বাদ। পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন আব্দুল মান্নান লস্কর। দিনমজুরী করেন। বলছিলেন, "পরিবারের কয়েকজনের নাম বাদ পড়েছে। কেন যে তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ল, সেটা জানতে এক দিন কাজ কামাই করে আবারও আসতে হবে।" সরকার বলছে, যাদের নাম বাদ পড়ল, তাদের চিন্তার কারণ নেই। একমাসের মধ্যে আবারও দাবী পেশ করা যাবে তথ্য নথি সহ। আর যাদের নাম বাদ পড়েছে, তাদের এখনই অবৈধ বিদেশী বলে চিহ্নিতও করা হবে না বা বন্দী শিবিরে পাঠানো হবে না। আপাতত আসামের মানুষ সেই আশ্বাসেই ভরসা রাখছেন। কারণ যেভাবে নির্দেশ আসবে সরকারের, সেইভাবেই নথি জমা করে জাতীয় নাগরিক পঞ্জীতে নাম তোলার চেষ্টা করবেন এই ৪০ লক্ষ মানুষ। কারণ তারা জানেন আসামে থাকতে গেলে নাগরিক পঞ্জীতে নাম তোলাটা খুব জরুরী। যাতে বাঙালী বলে তাদের দিকে কেউ আঙ্গুল তুলে আর না বলতে পারে যে তোমরা তো অবৈধ বাংলাদেশী - যেমনটা হয়ে এসেছে এত বছর। "এটা কীভাবে সম্ভব যে বাবা বা স্বামী হিসাবে আমি বৈধ নাগরিক হলাম না, অথচ স্ত্রী, কন্যা আর এক পুত্রের নাম নাগরিক পঞ্জীতে উঠল! আবার এক ছেলের নাম আছে, অন্যজন বাদ!" বলছিলেন কাছাড় জেলার শিলকুড়ি এলাকার বাসিন্দা নিরঞ্জন সূত্রধর। +text: স্টিভ রোডস: বিশ্বকাপে একমাত্র ইংলিশ কোচ তারপরও গতবছরের জুনে যখন বাংলাদেশের হেড কোচ হিসেবে স্টিভ রোডসের নাম ঘোষণা করা হয়, অনেকেই কপাল কুঁচকেছিলেন। অথচ সেই রোডসই ধীরে ধীরে হয়ে উঠছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের গূরুত্বপূর্ণ চরিত্র। প্রথম কোন ত্রিদেশীয় সিরিজ জিতে তো ইতিহাসেই নাম লিখিয়ে ফেলেছেন। ''আমি হয়তো তালিকার নিচের দিকেই ছিলাম। অন্যরা দায়িত্ব নেয়নি বলে আমার কপাল খুলেছে। আমিও শুরুতে ভালো কোচ ছিলাম না। ধীরে ধীরে আমি পরিণত হয়েছি।'-সরল স্বীকারোক্তি রোডসের। কথা বার্তার মতো আচরণেও এরকম সরল ৫৪ বছর বয়সী রোডস। কোচ হিসেবে আন্তরিকতাকে সবার আগে রাখতে চান রোডস মুখে স্মিত হাসি লেগেই আছে। চশমা চোখে রীতিমতো প্রফেসর মনে হয়। তবে ক্লাসরুমের বদলে ক্রিকেট মাঠে থাকলেও চলাফেরায় একেবারেই ধীর স্থির। ক্রিকেটারদের ছাত্রের চেয়ে বন্ধুই মনে করেন বেশি। 'দেখুন ফুটবল ম্যানেজাররা হয়তো হাফটাইম অনেক কিছু ছুঁড়ে মারেন। তবে সবসময় আপনি এমনটা করতে পারেন না। এর কোন মূল্য নেই। আমার দর্শন হল খেলোয়াড়দের বোঝা। কারো হয়তো পিঠে হাত বুলাচ্ছি আবার কারো সাথে প্রয়োজনে একটু কঠোর হচ্ছি। যে মূহুর্তে দলের জন্য যেটা দরকার।' এই শান্তশিষ্ট মানুষটিও অবশ্য বিশ্বকাপ ঘিরে নিজের হৃদস্পন্দন ঠিকই টের পাচ্ছেন। সাইফুদ্দিনের সঙ্গে স্টিভ রোডস তাঁর ক্রিকেটারদের কিভাবে প্রস্তুত করছেন তিনি? 'বিশ্বকাপ বিশাল ব্যাপার। কিন্তু আমি নিজেকে সবসময় শান্ত রাখছি। কারণ এখানে অন্য যেকোন ওয়ানডে ম্যাচের মতো শেষ পর্যন্ত বেসিকটাই ভালো করতে হয়। খেলোয়াড়দেরও রিল্যাক্স রাখার চেষ্টা করছি, খুব বাড়তি কিছু করছি না। কারণ বেশিরভাগ সময় ক্রিকেটাররা খুব বেশি কিছু করতে গেলেই সমস্যা তৈরী হয়।' আপাতত নিজের দীর্ঘদিনের ইংলিশ অভিজ্ঞতা মাশরাফি-সাকিবদের ঢেলে দিচ্ছেন স্টিভ রোডস। লর্ডস, ওভাল, প্রতিটি ভেন্যু তার নখদর্পণে। ক্রিকেটারদের নানা কৌতুহল প্রতিনিয়ত মিটিয়ে চলেছেন। বিশ্বকাপ ঘিরে বাংলাদেশের সমর্থকদের প্রত্যাশার পারদটা ঠিকই টের পাচ্ছেন। নিজের উপরও একটা চাপ আছে বৈকি। তবে সবাইকেই বাস্তববাদী হবার আহবান রোডসের। 'এখানে যেটা ভালো লাগে, সবাই সেরা ফলফলটা চায়, জিততে চায়। আমি জানি বিশ্বকাপে আমার পারফরম্যান্সও মূল্যায়ন হবে। সেটাই নিয়ম। এই দেশে ক্রিকেট নাম্বার ওয়ান। তবে সবাইকে বাস্তববাদী হতে হবে। বাংলাদেশের ভালো সম্ভাবনা আছে, একবার সেমিতে গেলে যেকোন কিছুই হতে পারে।' বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ জয় দলকে বাড়তি প্রেরণা দেবে পাঁচ সিনিয়র ক্রিকেটারের উপরই কি আস্থাটা বেশি রাখছেন তিনি? রোডস অবশ্য প্রবল আপত্তি তোলেন এখানে! সাকিব, তামিম, মাশরাফি, মুশফিক, রিয়াদের সাথে মুস্তাফিজকে ঢুকিয়ে ���ালিকাটা ৬ জনের করতে চান। 'সাকিবের অনেক কিছু প্রমাণ করা বাকি। আইপিএলে এবার একটু ভিন্ন অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁর। সে পারফরম্যান্সের জন্য ক্ষুধার্ত থাকবে।' মাশরাফিও সফল হতে চাইবে। সে এখন এমপি। হয়তো এটাই তার শেষ বিশ্বকাপ। মুশফিক, রিয়াদ, তামিম প্রত্যেকেই সেরা ফর্মে আছে, তাঁদের অভিজ্ঞতা ভীষণ কাজে দেবে। ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চান বাংলাদেশ দলে স্টিভ রোডসের ব্যক্তিগত লক্ষ্যও আছে বিশ্বকাপে ১০ দলের মধ্যে তিনিই একমাত্র ইংলিশ হেড কোচ। আবার কোচ হিসেবেও এটাই তাঁর প্রথম বিশ্বকাপ। আর সেটাও ইংল্যান্ডের মাটিতেই। 'এটা ভীষণ গর্বের। খুবই উত্তেজনাকর। আর এ কারণেই আমি নিজেকে প্রতিনিয়ত শান্ত রাখার চেষ্টা করছি।' কিন্তু ৮ জুন কার্ডিফে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে নিজেকে কি করে শান্ত রাখবেন তিনি? 'ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার অনুভূতি আমি এখনো জানিনা। তাঁরা হট ফেভারিট। আর আমি আন্ডারডগ থাকতেই পছন্দ করি। হারানোর কিছু নেই। আবার যদি জিতে যাই তাহলে সেটা বড় দলের কাছ থেকে কোন কিছু ছিনতাই করে নেয়ার মতো ব্যাপার।' 'দেখুন আমি আপাদমস্তক ইংলিশ হলেও বাংলাদেশের হয়ে তাঁদের হারাতে চাইবো।' ২০১৫ বিশ্বকাপে অবশ্য সেই অভিজ্ঞতা আগেই হয়েছে টাইগারদের। আরও পড়তে পারেন: এবার ফিনিশিংয়ের অপেক্ষায় মুশফিকুর রহিম অস্থিরমতি ইংলিশ আবহাওয়ায় স্বাগত ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯: তামিম ইকবালের চোট ও ওভালের প্রস্তুতি বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচটা গূরুত্বপূর্ণ বলছেন রোডস পাখির চোখ দক্ষিণ আফ্রিকা তবে আপাতত স্টিভ রোডস সব নজর রাখছেন দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে। বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ, তাঁর বিশ্বকাপ অভিষেক। 'দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ম্যাচটা কঠিণ হতে যাচ্ছে নি:সন্দেহে। আমাদের ছেলেরা বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। তবে দারুণ হবে যদি বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকাকে চাপে ফেলতে পারে।' সবশেষে দর্শকদের জন্যও বার্তা দিলেন রোডস। 'আশা করছি দারুণ টুর্নামেন্ট হবে। তবে আমাদের দর্শকদের একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে। আমরা হয়তো খুব টাইট কোন ম্যাচ হেরে যাব, আবার কিছু জিতবো। তবে সেরাটাই দিবো আমরা। ক্রিকেটীয় পরিবারেই বেড়ে ওঠা। ইংল্যান্ডের হয়ে ১১ টেস্ট ও ৯ ওয়ানডের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের চেয়ে বেশি পরিচিত নিজের ক্লাব ওরস্টারশায়ারের কোচ ও প্রশাসক হিসেবেই। +text: ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৫০০'র বেশী স্থাপনা যুক্তরাজ্য থেকে স্ক্যান্ডিনেভিয়া হয়ে জাপান পর্যন্ত অনেক দেশেই আরো কয়েকদিন এই তাপদাহ অব্যাহত থাকার কথা। অত্যধিক তাপমাত্রার কারণে কয়েক হাজার মানুষের হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াকে কেন্দ্র করে জাপান কিছুদিন আগে জাতীয় দুর্যোগ অবস্থা ঘোষণা করে। দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া, পূর্ব কানাডা, আলজেরিয়া ও নরওয়েতে উচ্চ তাপমাত্রা সংক্রান্ত বিভিন্ন নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে এবছর। ওমানে রাতের তাপমাত্রার মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস - যা ওমানের ইতিহাসের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার হিসেবে সবচেয়ে বেশি। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: সুইডেনে অভিবাসন কঠিন হচ্ছে কেন? বৃষ্টির ঘ্রাণ কেন ভালো লাগে আমাদের? যে কারণে নাগরিকত্ব নিয়ে শঙ্কায় আছে আসামের বাংলাভাষীরা গ্রীসে দাবানলে মারা গিয়েছে অন্তত ৮০জন সুইডেনের উত্তরাঞ্চলের দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে উত্তরের মেরু এলাকায়। গ্রীসের এথেন্সের কাছে দাবানলে এরই মধ্যে মারা গেছেন অন্তত ৮০ জন। যেসব দেশে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি? জুলাই মাসের শুরু থেকে অনেক দেশেই তাদের নিয়মিত গড় তাপমাত্রার চেয়ে বেশি তাপমাত্রা অনুভূত হয়েছে। যেসব দেশে গড় তাপমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি তাপমাত্রা অনুভূত হয়েছে সেগুলো হলো: যুক্তরাজ্য, স্ক্যান্ডিনেভিয়া (মূলত নরওয়ে আর সুইডেন), পূর্ব কানাডা, পূর্ব সাইবেরিয়ার বেশকিছু এলাকা, জাপান ও কাস্পিয়ান সাগর সংলগ্ন এলাকা। পাকিস্তানে এবছর অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে মারা গিয়েছে ৬০ জনের বেশী মানুষ যেসব দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কম তাপমাত্রা অনুভূত হয়েছে সেগুলো হলো: স্পেন ও পর্তুগাল সহ দক্ষিণ ইউরোপের কয়েকটি অঞ্চল, রাশিয়ায় উত্তর সাইবেরিয়ার কিছু অঞ্চল ও দক্ষিণ আমেরিকার সর্বদক্ষিণাঞ্চল। কোপার্নিকাস জলবায়ু পরিবর্তন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী তৈরি করা মানচিত্র অনুযায়ী ইউরোপের সবচেয়ে উষ্ণ জুলাই ছিল ২০১০'এ। সেসময় গড়ের চেয়ে দুই ডিগ্রি বেশী তাপমাত্রা পরিলক্ষিত হয়। এবছরের জুলাইও ইউরোপের উষ্ণতম জুলাই মাসগুলোর মধ্যে অন্যতম হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জুন মাস কতটা উষ্ণ ছিল? যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সেন্টার্স ফর এনভায়রনমেন্টাল ইনফরমেশনের তথ্য অনুযায়ী, ১৮৮০ সালের পর থেকে পঞ্চম উষ্ণতম জুন মাস ছিল এবছর��� উষ্ণতম জুন ছিল ২০১৬ সালে। তখন বিশ্বের তাপমাত্রা গড়ের চেয়ে ০.৯১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশী ছিল। অতিরিক্ত উষ্ণতা বিশ্বজুড়ে ঐ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রার চেয়ে বেশী তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়া টানা ৪২তম জুন এবং টানা ৪০২তম মাস ছিল জুন ২০১৬। জাপানে অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে ঘোষণা করা হয়েছে জাতীয় দুর্যোগ তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ কী? বিশ্বের নানা জায়গায় তাপমাত্রা বৃদ্ধির কোনো একটি সুনির্দিষ্ট কারণ নেই। বিবিসি'র বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ডেভিড শুকম্যান বলেন, "অবাক করা বিষয় হলো, বর্তমানে একই সময়ে একাধিক তাপদাহ অনুভূত হচ্ছে।" "পরিবেশ বিজ্ঞানীরা এমনটাও বলছেন না যে প্রতিবছরই এমন তাপদাহ থাকবে। কিন্তু তাঁরা বলছেন মাত্রাতিরিক্ত উষ্ণ আবহাওয়ার সম্ভাবনা দিন দিন বাড়বে", বলেন মি. শুকম্যান। কী? এবারের গ্রীষ্মে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মাত্রাতিরিক্ত উষ্ণ তাপমাত্রা অনুভূত হয়েছে। +text: খালেদার অনুপস্থিতিতেই চলবে বিচার কাজ দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম জানিয়েছেন এর ফলে রায় দিতে কোন বাধা থাকবে না। এদিকে আজকে এই রায় ঘোষণার দিন ধার্য রয়েছে। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার বিচারক আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেছিলেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা, যে আবেদন হাইকোর্ট খারিজ করে দেয়। ২০১০ সালে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট-এ অর্থের উৎস নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর ২০১১ সালের আগস্ট মাসে দুর্নীতি দমন কমিশন জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাটি দায়ের করে। ২০১৪ সালের মার্চ মাসে এ মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার কাজ শুরু হয়। এরপর মামলার কার্যক্রম স্থগিতে আবেদন জানিয়ে উচ্চ আদালতে যান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা । আরো পড়ুন: জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা যেভাবে এগিয়েছে খালেদা জিয়ার মাথায় আরো যেসব মামলা ঝুলছে 'আমাকে জোর করে আনা হয়েছে, আর আসবো না' বাংলাদেশের একটি আদালতে আজ সোমবার জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা রায়ের জন্য কারাবন্দী খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে এই মামলাটির বিচার চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছে। +text: শুরু থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় বাংলাদেশ শুরুতে ব্যাট করে বাংলাদেশ ২৩২ রান তোলে। সর্বোচ্চ ৬২ রান তোলেন মোহাম্মদ মিথুন। লোয়ার অর্ডারে মেহেদী হাসান মিরাজ ২৬ এবং মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ৪১ রান তোলেন। নিউজিল্যান্ড ব্যাট করতে নেমে বেশ সাবধানী শুরু করে। ধীরে ধীরে রানের গতি বাড়িয়ে মার্টিন গাপটিল ও হেনরি নিকোলস ১০৩ রানের জুটি গড়েন। নিকোলস ৫৩ রান এবং উইলিয়ামসন ১১ রান করে ফিরে যান। এরপর রস টেলর এবং মার্টিন গাপটিল রানের চাকা সচল রেখে নিউজিল্যান্ডকে নিরাপদে নির্ধারিত লক্ষ্য অতিক্রম করান। ১১৭ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন গাপটিল। আরো পড়ুন: যেভাবে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দলে ফিরলেন সাব্বির রহমান নিউজিল্যান্ড সফর কি বাংলাদেশের জন্য আসল পরীক্ষা? বাংলাদেশ জাতীয় দলে ঘরোয়া ক্রিকেট তারকাদের সুযোগ কতটা? কোন কোন জায়গায় পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ? টপ অর্ডার একদম ম্যাচের গোড়া থেকেই উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। যার মধ্যে তামিম ইকবাল ৬ বলে ৫, লিটন দাস ৮ বলে ১ রান করে আউট হয়ে যান। সৌম্য সরকার কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও ২২ বলে ৩০ রান করে তিনিও প্যাভিলিয়নে ফেরেন। টপ অর্ডার নিউজিল্যান্ডের পেস বোলারদের গতি সামলাতে ব্যর্থ হয়। নিখাদ ব্যাটিং উইকেট ছিল ন্যাপিয়ারে তবে শুরুর কিছু ওভার উইকেট বাঁচিয়ে খেললে পরের দিকে স্কোরিং রেট বাড়িয়ে নেয়া যেতো। মিডল অর্ডারে একমাত্র মিথুন ৯০ বলে ৬২ রান তুলে ২০০ এর ঘরে নিয়ে যান বাংলাদেশের ইনিংস। মুশফিকুর রহিম করেন ৫, সাব্বির রহমান ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ উভয়েই ১৩ রান করে করেন। বোলারদের ব্যর্থতা বোলিংয়েও বাংলাদেশ কখনোই নিউজিল্যান্ডকে চাপে ফেলতে পারেনি। যতক্ষন উইকেটে ছিলেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা ততই থিতু হয়ে ব্যাট করতে থাকেন। বাংলাদেশ আজকের ম্যাচে অলরাউন্ডার সহ নয়জন ব্যাটসম্যান নিয়ে মাঠে নামে। পেস বা স্পিন কোনো বোলিং দিয়ে নিউজিল্যান্ডকে বিপদে ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ নয়জন ব্যাটসম্যান নিয়ে নামার পরও ব্যাটিং ব্যর্থতায় যে ঘাটতি ছিল, সেটা পূরণ করতে পারেননি কোন বোলারই। মাশরাফী বিন মোত্তর্জা ও মুস্তাফিজুর রহমান ছিলেন আজকের ম্যাচের দুজন স্পেশালিস্ট পেসার, তারা কোন উইকেটই শিকার করতে পারেননি। এছাড়া মিরাজ ও সাইফুদ্দিন বল করে খুব সুবিধা করতে পারেননি। পঞ্চম বোলারের অভাব পূরণে কাজে লাগানো হয় সাব্বির রহমান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও সৌম্য সরকারকে। কিন্তু এধরণের উইক��টে শুরুতে চাপে না ফেলতে পারলে ম্যাচে ঘুরে দাড়াঁনো কঠিন হয়ে পড়ে, সেখান থেকেই পরাজয়ের দিকে এগুতে থাকে বাংলাদেশ। ৩ ম্যাচ সিরিজের ২য় ওয়ানডেতে দুদল মুখোমুখি হবে শনিবার। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন:বাংলাদেশে গণতন্ত্র রক্ষায় ট্রাম্প প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেবার আহ্বান বিশ্বের কুখ্যাত অপরাধী 'এল চাপো' দোষী প্রমাণিত বাংলাদেশে এফএম রেডিওতে কি সংবাদ চলে? বুধবার নিউজিল্যান্ডের ন্যাপিয়ারে স্বাগতিক দলের বিপক্ষে ৮ উইকেটে হেরে গিয়েছে বাংলাদেশ। +text: বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭ হাজার ৮৭ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে মৃত্যু হয়েছে ৫৩ জনের। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়। গত আটই মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর এই প্রথম একদিনে এতো বেশি আক্রান্ত শনাক্ত হল। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট কোভিড-১৯ আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৩৬৪ জন। আর এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৯ হাজার ২৬৬ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বর্তমানে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের হার ২৩.৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০ হাজার ৭২৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে এসব ফলাফল পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে আগের তুলনায় সুস্থতার হার কিছুটা কমে এসেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৭০৭ জন আর এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৫২ হাজার ৪৮২ জন। গত বছরের মার্চের ৮ তারিখে বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপরের দুই মাস দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা তিন অংকের মধ্যে থাকলেও সেটা বাড়তে বাড়তে জুলাই মাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। এরপর বেশ কিছুদিন দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা কমতে কমতে এক পর্যায়ে তিনশোর ঘরে নেমে এসেছিল। তবে এবছর মার্চের শুরু থেকেই শনাক্তে ঊর্ধ্বগতি শুরু হয়। এমনকি মৃত্যুর সংখ্যাও বেশ কিছুদিন দশের নিচে ছিল। কিন্তু তাতেও দেখা দেয় ঊর্ধ্বগতি। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এই সপ্তাহ থেকেই বাংলাদেশে আবার লকডাউন জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। চিকিৎসক এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, হাসপাতালগুলোর ওপর যে হারে চাপ বাড়ছে, তাতে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা সেবা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্���া দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? বিশ্ব মহামারি শেষ হতে কতদিন লাগবে? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় করোনাভাইরাস নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা ৭ হাজার ছাড়িয়েছে। +text: অভিযান চালানোর দায়িত্ব এখন র‍্যাবকে দেয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, বিভ্রান্তি এড়াতে অভিযানের পুরো দায়িত্ব র‍্যাবকে দেয়া হয়েছে। তবে এতদিন ধরে অবৈধভাবে ক্যাসিনো বাণিজ্য চলার পেছনে পুলিশ প্রশাসনের কারও যোগসাজশ ছিল কিনা, এমন প্রশ্ন উঠছিল গত কয়েকদিন ধরে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর দল এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর কিছু নেতা কর্মীর দুর্নীতিসহ নানা অপরাধে জড়ানোর বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযান চালানোর কথা বলেছিলেন সিনিয়র নেতাদের সাথে বৈঠকে। এরপর প্রথমে র‍্যাব ঢাকায় চারটি নামকরা ক্লাবে অভিযান চালিয়ে অবৈধ জুয়ার আসর বা ক্যাসিনো বাণিজ্য বন্ধ করেছিল গত ১৮ই সেপ্টেম্বর। দু'দিন পর পুলিশও অবৈধ ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ক্লাবে অভিযান শুরু করেছিল। তারপর থেকে পুলিশ এবং র‍্যাব একের পরে এক অভিযান চালিয়ে আসছিল। তবে এখন পুলিশকে বাদ দিয়ে র‍্যাবকে এককভাবে এই অভিযানের দায়িত্ব দেয়া হলো। অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো বাণিজ্যের গল্প একের পর এক যখন বেরিয়ে আসছে, তখন এনিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। বড় প্রশ্ন হিসেবে এসেছে, এতদিন ধরে অবৈধভাবে ক্যাসিনো বাণিজ্য চলেছে কিভাবে? অবৈধ ক্যাসিনো বাণিজ্যসহ দুর্নীতি বিরোধী চলমান অভিযানে এখন র‍্যাবকে একক দায়িত্ব দেযা হয়েছে পুলিশ র‍্যাব এবং সরকারসহ সংশ্লিষ্ট এর দায় নিতে রাজি নয়। কিন্তু সরকারের অর্থমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন যে, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী বা প্রশাসনের নজরের বাইরে অবৈধ ক্যাসিনো বাণিজ্য চলেছে কিভাবে ? সেই প্রেক্ষাপটে অভিযানের দায়িত্ব থেকে পুলিশ বাদ পড়লো। ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো: শফিকুল ইসলাম বলছিলেন, একই কাজ বিভিন্ন বাহিনী করলে ভাল ফল আসবে না, এই যুক্তিতে র‍্যাবকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। "একই কাজ একটা বাহিনী করা ভাল। একটা কাজ যদি পাঁচজনকে ভাগ করে দেয়া হয়, পাঁচজন পাঁচটা ফলাফল দেখাবে। একারণে র‍্যাবকে দায়িত্ব দিয়েছে।" কিন্তু প্রশাসনের নজরের বাইরে অবৈধ ক্যাসিনো বাণিজ্য চলছিল কিভাবে-এমন প্রশ্ন যে উঠেছে, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকার পুলিম কমিশনার বলেছেন, "শুধু পুলিশের কথা বলেনি যে, পুলিশের চোখের সামনে এসব চলছিল। র‍্যাবতো এই এলাকার বাইরে ছিল না। সবার চোখের সামনেই চলছিল। তো র‍্যাবকে দায়িত্ব দিয়েছে, তারা দায়িত্ব পালন করছে। আমাদের বলা হয়েছে, একাসাথে এককাজ একাধিক বাহিনী করলে সমস্যা হতে পারে। সুতরাং তারাই করবে।" স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সাংবাদিকদের প্রশ্নে এটুকুই বলেছেন যে, র‍্যাব এই অভিযান শুরু করেছে, সেকারণে তাদেরকেই এর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণারয়ের কর্মকর্তারা যুক্তি দিয়েছেন , বিভ্রান্তি এড়াতে র‍্যাবকে অভিযানের একক দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তবে ঢাকায় পুলিশ ষ্টেশন থেকে অল্প দূরত্বেই বিভিন্ন জায়গায় ক্লাবগুলোতে অবৈধ ক্যাসিনো বাণিজ্য ধরা পড়েছে। ফলে এসব চলার পেছনে পুলিশ প্রশাসনের দিকেই আঙুল তোলা হচ্ছে বিভিন্ন মহল থেকে। অবৈধ ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে পুলিশ এতদিন কেন ব্যবস্থা নেয়নি, সেই প্রশ্ন উঠেছে ঢাকার পুলিশ কমিশনার অবশ্য বলেছেন যে, পুলিশের কেউ জড়িত ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। র‍্যাব পুলিশেরই একটা বিশেষ বাহিনী। সাধারণ পুলিশ থেকেই উর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা র‍্যাবের প্রধানের দায়িত্ব পান। র‍্যাবে অন্যান্য পদে সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনী থেকে কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। বিশ্লেষকরা বলেছেন, অবৈধ ক্যাসিনো বাণিজ্যে যেখানে বড় অংকের অর্থে বিষয় ছিলো, ফলে এটি আগে কারোই নজরে আসেনি, এই যুক্তি খাটে না বলে তারা মনে করেন। দুর্নীতি বিরোধী বেসরকারি সংস্থা টিআইবি'র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল মনে করেন, দীর্ঘ সময় ধরে ক্যাসিনো বাণিজ্য চলার দায় পুলিশ বা র‍্যাব কেউই এড়াতে পারে না। "যে ঘটনাগুলো ঘটছে, সেটার জন্য যদি আমরা মনে করি যে পুলিশ এখানে সেভাবে কাজ করেনি, তাদের অবহেলা যদি আমরা ধরতে চাই, তাহলে কারও অজান্তে না হওয়ার প্রতিফলন র‍্যাবের ওপরও পড়তে পারে। এটা নিয়ে আমরা প্রশ্ন করতে পারি যে, এখানে সরকারের কৌশলগত কোন কারণ আছে কিনা?" র‍্যাবের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে রাজি হননি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সর্ম্পকিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু বলছিলেন, কোন একটি বাহিনীকে দিয়ে সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করানো হলে তাতে সমন্বয়ের অভাব থাকে না। এটাকে তিনি সরকারের একটা কৌশল বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশে পুলিশকে বাদ দিয়ে বিশেষ বাহিনী র‍্যাবকে অবৈধ ক্যাসিনো বাণিজ্যসহ দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের একক দায়িত্ব দেয়ার বিষয় নিয়ে এখন বিভিন্ন মহলে নানা আলোচনা চলছে। +text: উদ্ধারকৃত এমুর বাচ্চাদের খাওয়ানো হচ্ছে এমু হচ্ছে উটপাখী জাতীয় একধরণের বড় আকারের পাখী - যা প্রধানত অস্ট্রেলিয়ায় পাওয়া যায়। শনিবার ভোররাতে সাতক্ষীরা জেলার পদ্মশাখরা গ্রামে ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় একটি চোরাচালানি দলের হাত থেকে এগুলো উদ্ধার করে বিজিবির একটি টহল দল। বিজিবির ৩৩ ব্যাটলিয়নের প্রধান লে: কর্ণেল মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেন, ফল রাখার প্লাস্টিকের ক্রেটে করে এই এমুর বাচ্চাগুলোকে বহন করা হচ্ছিল। বিজিবি-র উপস্থিতি টের পেয়ে চোরাচালানিদের দলটি বাক্সগুলো ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। তাদের কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। কর্ণেল মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, মোট ৬৫টি এমুর বাচ্চা ধরা হয়েছিল - যার মধ্যে বেশ ১০-১২টি মারা গেছে, তবে ৫০টির বেশি এখনো জীবিত আছে। কেন এগুলো বাংলাদেশে আনা হচ্ছিল তা এখনও বের করা যায় নি। সাতক্ষীরা সদরে বিজিবির ক্যাম্পে পাখীর বাচ্চাগুলো রাখা হয়, এবং সেখানকার ভেটেরিনারি সার্জনের পরামর্শ অনুযায়ী এদেরকে ঢাকা চিড়িয়াখানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন। বিবিসিতে আরও পড়তে পারেন: বিজেপির আমন্ত্রণে ভারত সফরে আওয়ামী লীগ নেতারা মোবাইল ফোনে ফ্রি অ্যাপ থেকে আয় হাজার হাজার ডলার শিশু-ধর্ষণের কারণ কি শুধুই বিকৃতকাম না কুসংস্কার? এমুর মাংস তেল এবং চামড়ার জন্য ফার্মে এর চাষ করা হয় সাতক্ষীরার ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, এমুর বাচ্চাগুলো ছোট - একটা বড় মোরগের মত আকারের। তিনি জানান, জীবিত এমুর বাচ্চাগুলো সুস্থ আছে এবং তাদেরকে সাধারণ হাঁসমুরগির খাবার, কলা ইত্যাদি খাওয়ানো হচ্ছে। কর্ণেল মুস্তাফিজ জানান, বাংলাদেশে এমু চোরাচালান হয়ে আসার ঘটনা তারা আগে কখনো দেখেননি । এগুলো কি পাখী এবং কেন আনা হয়েছে তাও তারা বুঝতে পারেন নি। পরে প্রাণীবিজ্ঞানীদের সাথে কথা বলে তারা নিশ্চিত হয়েছেন যে এগুলো এমু। তিনি জানান, চোরাচালানিদের ধরার জন্য তারা অনুসন্ধান চালাবেন। চিড়িয়াখানায় একটি পূর্ণ বয়স্ক এমু উটপাখী বলতে তা বোঝায় তা মূলত দুই ধরণের - একটি হচ্ছে এমু , আরেকটি অস্ট্রিচ। এমু পাওয়া যায় অস্ট্রেলিয়ায়, আর অস্ট্রিচ আকারে আরো বড় এবং মূলত আফ্রিকা মহাদেশের পাখী। একটি পূর্ণ বয়স্ক এমু পাঁচ থেকে ৬ ফিট পর্যন্ত উঁচু হতে পারে । এর মাংস, তেল এবং চামড়ার জন্য এখন বিভিন্ন দেশের ফার্মে এর চাষ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের দিনাজপুরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে একটি অস্ট্রিচের খামার স্থাপিত হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সাতক্ষীরায় এক অভিযান চালিয়ে ৬৫ টি এমুর বাচ্চা উদ্ধার করেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি। +text: জুলাই থেকে সব পণ্য ও সেবার ওপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আগামী জুলাই থেকে বাস্তবায়ন হতে যাওয়া ঐ আইন অনুযায়ী সব পণ্য ও সেবায় ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হবে। ব্যবসায়ীরা দাবি করছে ভ্যাটের হার ৭-১০ শতাংশের মধ্যে রাখা হোক। সম্প্রতি এক বাজেট পূর্ব পরামর্শক সভায় এ নিয়ে তুমুল হট্টগোল হয়েছে। ব্যবসায়ীরা আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন এবং অর্থমন্ত্রীও ছেড়ে কথা বলেননি। পুরনো ঢাকার চকবাজারের ব্যবসায়ী এফবিসিসিআই'র সাবেক পরিচালক এবং ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরামের সভাপতি আব্দুস সালাম বলেন, "আমরা ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে পারবো না। এখন পর্যন্ত মফস্বল এরিয়াতে ভ্যাট বুঝেই না। আমরা ১৫ পার্সেন্ট দিতে পারবো না কারণ আমরা এই ১৫ পার্সেন্ট আদায় করতে পারবো না।" '১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে পারবো না'- আব্দুস সালাম, ব্যবসায়ী ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্যাকেজ পদ্ধতিতে এতদিন যেভাবে সরকারকে ভ্যাট পরিশোধ করে আসছেন সেটাই বহাল থাকুক। ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হলে অনেক পণ্যেরই দাম বাড়াতে হবে। এতেকরে কেনাবেচা কমে যাবে । তবে রাজস্ব বোর্ডের হিসেবে কিছু পণ্য ও সেবা বাদে ১৯৯১ সাল থেকেই দেশে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাটের প্রচলন আছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মূসক নীতি বিভাগের সদস্য মো. জাহাঙ্গীর হোসেন নতুন আইনের প্রসঙ্গে মি. হোসেন জানান। "৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত যাদের বাৎসরিক টার্নওভার হবে তাদেরকে কোনো কর পরিশোধ করতে হবে না, একেবারে তারা কর আওতার বাইরে থাকবে। যাদের ৩০ লাখ এক টাকা থেকে ৮০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি তাদেরকে ৩ শতাংশ হারে টার্নওভার কর দিতে হবে। তবে মৌলিক খাদ্য, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত ছাড়া সবক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট কার্যকর হবে।" নতুন ভ্যাট আইন প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ ড. মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন বাংলাদেশের বাজারের বাস্তবতায় নতুন আইন বাস্তবায়ন কঠিন হবে। "যদি প্রপার অ্যাকাউন্ট না থাকে তাহলে-তো এটা নির্ধারণ করা মুশকিল। কেননা ভ্যাট হলো অ্যাকাউন্টস বেইজড সিস্টেম। আমাদের দেশেতো অনেক দোকানপাটেও কোনো ইসিআর বা ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্টার নাই। ভোক্তা যারা তারাও রিসিট চায়না দোকানদারেরাও রিসিট দেয় না। কাজেই এটা বাস্তবায়ন করাটা কঠিন।" জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন রাজস্ব বোর্ডের হিসেবে বাংলাদেশে নিবন্ধিত ৮ লক্ষ ৬৪ হাজার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৩২ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বছর শেষে যথাযথ হিসাবপত্র দাখিল করছে। অর্থনীতিবিদরাও বলছেন সব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করতে পারলে রাজস্ব আয় অনেক বাড়বে। মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, "সরকারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে রাজস্ব আহরণ। সেই রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর জন্য করের জালটা বাড়াতে হবে। অর্থাৎ যেসমস্ত নিবন্ধিত ব্যবসায়ী আছে যাদের দেয়ার কথা তারা যাতে ভ্যাট দেয়।" ভ্যাটের হার নির্ধারণ নিয়ে মি. ইসলামের মতামত হলো, "থাইল্যান্ডের মাথাপিছু আয় আমাদের চেয়ে বেশি, সিঙ্গাপুরেও অনেক বেশি তাদেরও (ভ্যাট) আমাদের চেয়ে অনেক কম আছে। কাজেই ১০ পার্সেন্ট ম্যাক্সিমাম হতে পারে।" নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হলে বেশকিছু পণ্যের দাম বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভোক্তা সংগঠন ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, "আমাদের উদ্বেগ ভোক্তাদের জীবন যাত্রার ব্যয় যাতে বৃদ্ধি না পায়। যদি ১৫ শতাংশ হারে যদি ভ্যাট সব পণ্য বা সেবার ওপরে আরোপ করা হয় তাহলে জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়ে যাবে।" বাংলাদেশে ২০১২ সালে প্রণীত ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন নিয়ে সরকার ও ব্যবসায়ীরা এখন মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। +text: একেকজন একেকভাবে তার হাসি প্রকাশ করে থাকেন। এটা ঠিক যে টেক্সট বা মেসেজ পাঠানোর সময় কেউই সময় কিম্বা ড্যাটা নষ্ট করতে চায় না। একারণেই অনেক মানুষ এমন শব্দ ব্যবহার করে, যা দিয়ে কোন ধ্বনিকে প্রকাশ করা যায়। যেমন ধড়াস, ক্রিং ক্রিং, হৈ হৈ, ঠাস ঠাস অথবা দ্রুম দ্রাম ইত্যাদি। হাসির শব্দ তো সার্বজনীন- সব ভাষাতে ও সব মানুষের মুখে এই হাসি একই রকমের। তাই কি? আসলে ঠিক তা নয়। আমাদের সবার হাসির শব্দ হয়তো একই রকমের হতে পারে, কিন্তু সেই হাসি যখন আমরা শব্দে প্রকাশ করি বা বানান করে লিখি তখন সেটা একেক দেশে একেক ভাষায় একেক রকমের হয়। ১. Haha অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারি অনুসারে হাসি প্রকাশের সঠিক বানান হচ্ছে ha ha অথবা Ha ha ha! কিন্তু যখন কোন মেসেজ বা টেক্সট পাঠানো হয় তখন সেটা কতো দ্রুত, কতো সহজে ও কতোটা স্বতস্ফূর্তভাবে পাঠানো হচ্ছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। সেকারণে আমরা সাধারণত hahaলিখে মেসেজ পাঠাই। অনেকে আবার hehe... ও লিখে থাকেন। কিন্তু এটা এখনো অতোটা জনপ্রিয় হতে পারেনি। ২. Kkkkkk Kkkkkkkkkk! আরো পড়তে পারেন: আপনার জন্য হাসি কেন দরকার? ফেসবুক-মেসেঞ্জার হ্যাক হওয়া ঠেকাবেন যেভাবে ফেসবুক গ্রুপ চ্যাট নিয়ে যত প্রশ্ন ও তার উত্তর আপনি যদি পর্তুগীজ কিম্বা কোরীয় ভাষাতে আপনার হাসি প্রকাশ করতে চান তাহলে লেখা হয় kkkkkk পর্তুগীজ ভাষীরা, বিশেষ করে ব্রাজিলে, হাসির ধ্বনি সাধারণত ইংরেজি বর্ণমালা kদিয়ে প্রকাশ করে। কিন্তু এই হাসিটাই যদি খুব বেশি জোরে হয় তাহলে কয়েকবার k ব্যবহার করে লেখা হয় kkkkkk - অনেকে আবার লেখেন rsrsrs যা পর্তুগীজ শব্দ রিসোসের (হাসি) সংক্ষিপ্ত রূপ। পর্তুগীজ ভাষার সাথে কোরীয় ভাষার কিছু কিছু মিল আছে, তবে যদি মুখ টিপে হাসা বা চাপা হাসি প্রকাশ করতে হয় তারা লিখবেন ㅋㅋㅋㅋㅋㅋ. k অথবা ㅋএই দুটোই মুখের গভীরে জিহ্বার একেবারে গোড়া থেকে উচ্চারণ করা হয়, যা হাসির ফলে যে শব্দ হয় তার কাছাকাছি হতে পারে। মানুষ যতো ভাষায় কথা বলে তার প্রায় সবকটিতেই খুশির শব্দ এই বর্ণমালার কাছাকাছি ধ্বনির সাহায্যে প্রকাশ করা হয়। ৩. Xaxaxa গ্রিসে কেউ যদি প্রাণ খুলে অনলাইনে হাসতে চান, তাহলে তিনি hahaha অথবা kkkkkk এই দুটোর কোনটাই না লিখে লিখবেন xaxaxa, কারণ সেখানে এই অক্ষরগুলো দিয়েই হাসিটাকে সঠিকভাবে প্রকাশ করা সম্ভব। ৪. Olololo আপনি কতোগুলো ভাষায় হাসতে পারেন? রাশিয়াতে কেউ যদি সিরিলিক বর্ণমালা ব্যবহার করে হাসি প্রকাশ করতে চান তাহলে তারাও লিখবেন хахаха. কেউ কেউ আবার লিখে থাকেন Olololo। ৫. Kiekie কেউ আবার যদি তার হাসি বান্টু ভাষা লিঙ্গালায় প্রকাশ করতে চায়, তাকে লিখতে হবেkiekie. গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ও তার প্রতিবেশী কয়েকটি দেশে ৮০ লাখ মানুষ এই ভাষাতে কথা বলেন। তাদের হাসি যদ��� এমন হয় যে তারা সেটা থামাতেই পারছেন না তাহলে তারা লিখবেন kiekiekie. ৬. Jajaja স্প্যানিশ ভাষায় হাসি। অনুষ্ঠানিক স্প্যানিশ ভাষায় যদি হাসি প্রকাশ করতে হয় তাহলে লিখতে হবে "Ja, ja, ja" কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই লেখেন jajaja - অথবা jajajajaaaa. এটা নির্ভর করে তার হাসির তীব্রতার ওপর। তবে একেক রকমের হাসির জন্যে ব্যবহার করা হয় একেক রকমের বর্ণমালা। যেমন দুষ্টু হাসির জন্যে je অথবা jejeje, নিঃশব্দ হাসির জন্য jijiji আর বিস্ময়কর হাসি বোঝাতে jojojo! ৭. mdr ফরাসী ভাষাতেও হাসির ধ্বনি যখন বানান করে লিখে প্রকাশ করা হয় তখন hahahaলেখা হয়। কিন্তু ফরাসী ভাষীরা তার পরিবর্তে কখনো সখনোmdr ব্যবহার করেন। কেন? কারণ এটা হচ্ছে mort de rire (হাসতে হাসতে মরে যাচ্ছি) এর সংক্ষিপ্ত রূপ। এছাড়াও এটি খুব দ্রুত টাইপ করা যায়। ৮. lwkmd Oh, you made me laugh নাইজেরিয়াতে কিছু হাস্যকর সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহার করা হয়। শুধু সংক্ষিপ্ত হওয়ার কারণেই সেটা করা হয় না। এটা অনেক জোরালোও বটে। lwkmd হচ্ছে laugh wan kill me die -এর সংক্ষিপ্ত রূপ, যার অর্থ বিষয়টি এতোটাই হাসির যে হাসতে হাসতে আপনি মরেই যাচ্ছেন। ৯. 555555 আপনি যদি কখনো কোন থাই বন্ধুর কাছ থেকে মজার মেসেজ পান তাহলে দেখবেন যে সে আপনাকে ইংরেজি 5 নম্বরটি কয়েকবার লিখে পাঠিয়েছে। থাইল্যান্ডে হাসির আওয়াজ হচ্ছে 555555. এই বর্ণমালা যে থাই ভাষা থেকে এসেছে সেটি 'ক্রা-দাই' ফ্যামিলির। এতে দক্ষিণপূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ চীন এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রায় সাড়ে নয় কোটি মানুষ কথা বলে থাকেন। কিন্তু আপনি যদি চীনে থাকেন, তাহলে সাবধান! সেখানে 5 এই নম্বরটি উচ্চারিত হয় "উ" শব্দের মতো যার সাথে আবার কান্নার আওয়াজের মিল আছে। ফলে সেখানে 555555 এর অর্থ হতে পারে গভীর কান্নাও। ১০. H অনেকেই লেখেন ههههه ল্যাটিন অক্ষরের পর সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় আরবী বর্ণমালা। ইসলামের প্রসারের সাথে সাথে এই ভাষাটিও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে। আরো অনেক ভাষা লেখা হয় আরবী বর্ণমালা ব্যবহার করে। এই বর্ণমালার একটি বৈশিষ্ট্য হলো যে এটি শুধু ব্যাঞ্জনবর্ণ ব্যবহার করে থাকে। ফলে তাদের ha তে aথাকে না। ফলে হাসির ধ্বনি হচ্ছে: hhhhhh অথবা ههههه ১১. Www জাপানি ভাষায় হাসির জন্যে শব্দ হচ্ছে ওয়ারাই অথবা 笑い এখন এটা টাইপ করতে সময় লাগে। ফলে অনেকেই লেখেন www অথবা wwwww. ১২. Ha3 ফোনে কিছু দেখে এক নারীর প্রাণবন্ত হাসি। মালয়েশিয়াতে তারা এটিকে আরো সংক্ষিপ্ত করেছে, যা যোগ করেছে একেবারে ভিন���ন মাত্রা। চাপা হাসি বোঝাতে লিখতে পারেন: Ha আর হাসি যদি জোরে হয় তাহলে লিখবেন Ha3 (যার অর্থ hahaha = ha x 3 = ha3) ১৩. Ahahah ভাববেন না যে এখানে টাইপ করতে গিয়ে ভুল হয়েছে। আমরা আসলেই লিখতে চেয়েছি ahahah. ইটালিয়ান ভাষায় hঅক্ষরটি উচ্চারিত হয় না। তবে এটি অন্যান্য স্বরবর্ণের উচ্চারণ বদলে দিতে পারে। এক্ষেত্রে a অক্ষরের পর h ব্যবহার কোন হাসির ব্যাপার নয়- ইটালিতেha এর অন্য একটি অর্থ আছে। তা থেকে আলাদা করতেই hএর আগে a ব্যবহার করা হয়। ১৪. høhøhø নরওয়েতে হাসি বোঝানো হয় কীভাবে? বেশিরভাগ মানুষই লিখেন hahaha. তবে কেউ কেউ তাদের নিজস্ব একটি প্রকাশভঙ্গির পক্ষে। høhøhø... ড্যানিশ ভাষা- hæhæhæ (যাhehehe এর কাছে) থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তারা এটা ব্যবহার করে থাকতে পারেন। আরো পড়তে পারেন: তূর্ণা ও উদয়ন ট্রেন দুর্ঘটনায় বহু হতাহত রোহিঙ্গা: মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার অভিযোগ কেন? চলতি বছরেই ১০০ বিস্ফোরণ: সুইডেনে হচ্ছে কি? আপনি আর কী লিখতে পারেন: "হাহাহা" অথবা "ওই মাই গশ, এতোই হাসির যে আমি হাসি থামাতে পারছি না!!!" +text: অর্থে তিন কোটি ডোজ টিকা কিনছে বাংলাদেশ। তবে টিকা পরিবহনসহ সব মিলিয়ে খরচ পড়বে পাঁচ ডলার। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ভারতকে যে দামে এই টিকা বিক্রি করবে কোম্পানিটি তার থেকে বাংলাদেশকে ৪৭ শতাংশ বেশি অর্থ দিতে হচ্ছে। খরচ প্রসঙ্গে যা বলছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বিবিসিকে জানিয়েছেন, "ওরা ডোজ প্রতি চার ডলার করে নিচ্ছে আর টিকা আনার খরচ, শুল্ক, ভ্যাট ইত্যাদির খরচের জন্য বেক্সিমকো নেবে ডোজ প্রতি এক ডলার করে।" বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব অর্থে তিন কোটি ডোজ টিকা কিনে তা বিনামূল্যে দেবে। কোভিড রোগীদের সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীসহ, কারা এই বিনামূল্যের টিকার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন - সেটি ইতিমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে সরকার। দামের ব্যাপারে মি. আলম জানিয়েছেন, "যখন আমাদের সাথে কথা হয়েছে তখন বলা হয়েছিল ভারতকে ওরা যে দামে বিক্রি করবে আমরাও সেই দামেই পাবো। যে সময়ে আমরা কথা বলেছি সেটা পাঁচ-ছয় মাস আগের কথা। এখন অনেক টিকা বাজারে আসছে কিন্তু সেই সময় আমাদের কাছে এছাড়া আরও কোন বিকল্প ছিল না।" টিকা কিনতে বাংলাদেশের খরচ হচ্ছে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার মতো। আর সেটি পৌঁছে দেয়া ও সংরক্ষণে এক হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশে টিকা দেয়া শুরু হবে। সিরাম ইন্সটিটিউটের কাছ থেকে টিকা আনার পর তা সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে চুক্তি করেছে সরকার। এ মাসের শুরুর দিকে টিকা কিনতে সিরাম ইন্সটিটিউটকে অগ্রিম টাকা জমা দিয়েছে বাংলাদেশ। মি. আলম জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে আরও টিকা কেনার জন্য ছয়শ মিলিয়ন ডলার নেয়া হবে বিশ্ব ব্যাংক ও এশিয়ান ইনফ্রাসস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে। টিকা পাবেন না যারা কোভিশিল্ড নামের টিকাটি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে তৈরি করেছে ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা। টিকাটি উৎপাদনে অ্যাস্ট্রাজেনেকার অংশীদার ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউট। বিশ্বের সবচাইতে বেশি সংখ্যায় টিকা উৎপাদন করে এই কোম্পানিটি। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশে টিকা দেয়া শুরু হবে বলে ইতিমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে সরকার। যেভাবে কাজ করবে বাংলাদেশের করোনাভাইরাস টিকার অ্যাপ কী ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের সামনে? করোনাভাইরাস: ঝুঁকিতে প্রবীণরা, যেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এমাসের ২১ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে ৫০ লাখ ডোজ বাংলাদেশে পৌঁছাবে। যা থেকে প্রথম ডোজ দেয়া হবে। পরবর্তী ডোজ আসবে দুই মাস পর। প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ আসবে। তিন কোটি ডোজ আসতে ছয়মাসের মতো লেগে যাবে। টিকার জন্য নিবন্ধন শুরু হবে ২৬শে জানুয়ারি থেকে। স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়াও, সম্মুখ সারির পেশায় থাকা ব্যক্তি এবং রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল যেসব রোগী তারা প্রথম ধাপে টিকা পাবেন। দ্বিতীয় ধাপে থাকবে স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে এমন ৬৫ বছর বয়স্ক ও তার উপরে যাদের বয়স তারা, শিক্ষাকর্মী, জনপরিবহনের কর্মীরা। স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে এমন ৬৫ বছর বয়স্ক ব্যক্তিরা দ্বিতীয় ধাপে টিকা পাবেন। তৃতীয় ধাপে থাকবেন তারা যাদের বয়স ৬৫ বছরের বেশি - কিন্তু কোন বড় অসুখ নেই। করোনাভাইরাসের টিকা দেয়ার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করছে সরকার। অগ্রাধিকার পাবেন এমন ব্যক্তিদের এর মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে। তবে দেশের জনগোষ্ঠীর দুটি অংশ আপাতত এই টিকা কর্মসূচীর বাইরে থাকবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলছেন, "১৮ বছর বয়সের নিচে যারা তাদের উপর টিকার কোন ট্রায়াল হয়নি। তাই তারা এই টিকা কর্মসূচীর বাইরে থাকবে। দুই নম্বর হচ্ছে গর্ভবতী নারী তাদেরও দেয়া হবে না কারণ তাদের উপরেও কোন ট্রায়াল হয়নি।" বাকিদের কি টাকা দিয়ে কিনতে হবে? তিনটি ধাপে যারা অগ্রাধিকার পাবেন তাদের টিকা দেবার পর বাংলাদেশ কবে আরও কত ডোজ টিকা আনতে পারবে - তার উপর নির্ভর করছে বাকিরা কিভাবে টিকা পাবেন। মি আলম বলছেন, "মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেটা বলেছেন যে এই টিকা যেভাবে দেয়া হবে সেভাবেই চলবে। তো আমরা যদি সেভাবে ধরি তাহলে বাকিরাও হয়ত বিনামূল্যেই পাবেন। সরকারতো অন্যান্য টিকার ক্ষেত্রে কোন মূল্য নিচ্ছে না। সরকার কিনে নিচ্ছে না। শিশুদের কোটি কোটি টাকার টিকা দেয়া হচ্ছে - সেটা সরকার কিনে দিচ্ছে।" বেসরকারি পর্যায়ে যদি কেউ টিকা আনতে চায় সে ব্যাপারে তিনি বলেন, কেউ আগ্রহ দেখালে সেটা নিয়ে ভাবা হবে। তার মতে, "বেসরকারি পর্যায়ে যদি আনা যায় তাহলে যাদের সামর্থ্য আছে - তারা কিনে নেবে। এখন লোকজন ঔষধ কিনছেন না?" টিকা নিতে আগ্রহী হলে যেসব বিষয় আপনার জানা থাকা জরুরি বাংলাদেশ ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউটের কাছ থেকে করোনাভাইরাসের যে টিকা কিনছে তাতে প্রতিটি ডোজের দাম পড়বে চার ডলার বা ৪০০ টাকার মতো। +text: কোভিড১৯ পরীক্ষার জন্য নাক থেকে নমুণা সংগ্রহ করা হয়। পুলিশ বলছে, মেডানের একটি বিমানবন্দরে নয় হাজার যাত্রীর ক্ষেত্রে নাক থেকে নমুনা সংগ্রহের কিট বা কাঠি ব্যবহার করা হয়েছে, সেটি এর আগেও ব্যবহার করা হয়েছিল। এই জালিয়াতির অভিযোগে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত ঔষধ কোম্পানি কিমিয়া ফার্মাকে এখন আইনের মুখোমুখি দাঁড়াতে হতে পারে। কোভিড-১৯ মহামারির সময় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে টেস্ট করার পরীক্ষার জন্য নাকের ভেতর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা একটি সাধারণত বিষয়। পুলিশ বলছে, উত্তর সুমাত্রার মেডানে অবস্থিত কুয়ালানামু বিমানবন্দরে এই জালিয়াতির ঘটনা গত ডিসেম্বর মাস থেকে চলে আসছে। বিমানে ভ্রমণ করতে হলে যাত্রী কোভিড-১৯ নেগেটিভ সনদ লাগে। সেজন্য বিমানবন্দরের ভেতরে যাত্রীদের নমুনা সংগ্রহ এবং তাৎক্ষণিক পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। কিমা ফার্মার সরবরাহ করা র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট ব্যবহার করছিল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। যাত্রীরা অভিযোগ করছিল যে তারা ভুয়া পজিটিভ রিপোর্ট পাচ্ছে। এরপর একজন পুলিশ ছদ্মবেশে যাত্রী সেজে পর��ক্ষা করতে যান। তার রিপোর্ট যখন পজিটিভ আসে, তখন অন্য পুলিশ পরীক্ষাগার ঘেরাও করে এবং সেখান থেকে একাধিকবার ব্যবহার করা টেস্ট কিট উদ্ধার করে। স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, এই জালিয়াতির মাধ্যমে ঔষধ কোম্পানির কিছু কর্মকর্তা প্রায় সোয়া লাখ ডলার হাতিয়ে নিয়েছে। এই অর্থ দিয়ে একজন অভিযুক্ত কর্মকর্তার জন্য বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে কি-না সেটি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এই ঘটনার পর কিমা ফার্মা তাদের অভিযুক্তদের বরখাস্ত করেছে এবং অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ আরো জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এশিয়ার যে কয়েকটি দেশ করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে বিপর্যস্ত হয়েছে তাদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া অন্যতম। দেশটিতে এ পর্যন্ত প্রায় ১৯ লাখ রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং মৃত্যুবরণ করেছে ৪৬ হাজারের বেশি। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন ভারতে চরম এই দুর্দশা তৈরি হলো কীভাবে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে সরকারের কাছে আবেদন শাপলা চত্বর সমাবেশের আট বছর পরে টিকে থাকার চেষ্টায় হেফাজত করোনাভাইরাস টেস্টের জন্য নাকের ভেতর থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে যে কাঠি ব্যবহার করা হয়, সেটি ধুয়ে পুনরায় বিক্রি এবং ব্যবহার করার অভিযোগে ইন্দোনেশিয়ার একটি ঔষধ কোম্পানির কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। +text: তিস্তা বাঁধ দুই দেশের পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিবদের নেতৃত্বে যৌথ নদী কমিশনের বিশেষজ্ঞ কমিটি সোমবার ঢাকায় সারাদিন ধরে বৈঠক করেছে। তবে সমঝোতার বিষয়গুলোতে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। অন্যদিকে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সেচমন্ত্রী সুভাষ নস্কর বলেছেন তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না৻ ‘‘এখন পর্যন্ত কি চুক্তি হচ্ছে বাংলাদেশে আর ভারত সরকারের মধ্যে, আমরা রাজ্য সরকার এ‘ব্যাপারে ওয়াকিবহাল নই‘‘, মি নস্কর বিবিসিকে বলেন৻ পশ্চিমবঙ্গের সেচ মন্ত্রী সুভাষ নস্কর দিল্লীতে অনুষ্ঠিত শেষ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন৻ “এরকম চুক্তির কথা হয়ে থাকলে পশ্চিমবঙ্গের তা জানা উচিত ছিলো৻ কারণ সংবিধান মতে, জল মূলত একটা স্টেট সাবজেক্ট৻ আর তিস্তার জলটা পশ্চিমবঙ্গকেই দিতে হবে যখন, তখন ব্যাপারটা আমাদের জানা উচিত ছিলো,” বললেন সুভাষ নস্কর৻ তিস্তার পানি নিয়ে দুই প্রধানমন্ত্রী আলোচনা করেছেন তবে তিনি এই আশা প্রকাশ করেন যে, ভারত সরকার পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের স্বার্থ রক্ষ�� করেই চুক্তিটি করবে৻ ঢাকা থেকে বিবিসির কাদির কল্লোল আরো জানাচ্ছেন : বাংলাদেশের পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব শেখ মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান বলেছেন, একদিনের এই বৈঠকে তিস্তা নদীর পানি বন্টনের ব্যাপারে সমস্যাগুলোতে সমাধানে পৌছানো সম্ভব হয়েছে। যার ভিত্তিতে ১৫ বছর মেয়াদের অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে পানি বন্টন কি ভাবে হচ্ছে, সে সব বিষয়ে পানি সম্পদ সচিব এ মুহুর্তে বিস্তারিত বলেন নি। তিনি উল্লেখ করেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তির এই খসড়া এখন অনুমোদন বা স্বাক্ষরের ব্যাপারে রাজনৈতিক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হবে। এ বছরই ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকায় সফরে আসার কথা রয়েছে। সে সময়ই চুক্তির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে তিনি মনে করেন। মি ওয়াহিদুজ্জামান জানিয়েছেন, এতদিন দুইদেশ কে কতটা পানি পেয়েছে এবং নদীর পানি প্রবাহ, এসব বিশ্লেষণ করেই তারা অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তির খসড়া তৈরি করেছেন। এই চুক্তি হওয়ার পরে জরিপ চালানো হবে, সেই জরিপের ভিত্তিতে স্থায়ী চুক্তির প্রশ্ন আসবে। অন্যদিকে দিল্লী থেকে বিবিসির সংবাদদাতা শুভজীত বাগচী জানাচ্ছেন : তিস্তার জলবন্টনের বিষয়টিকে বাস্তবায়িত করতে ভারতের যে একটা ইচ্ছা রয়েছে তার প্রমাণ প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এত বছর আগে দিল্লীতে করা যৌথ বিবৃতির ২৭ নম্বর অনুচ্ছেদ৻ সেখানে বলা হয়েছে, ‘তিস্তার জলবন্টনের বিষয়ে আলাপ-অলোচনা দ্রুত শেষ করতে হবে৻ এই মর্মে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের মন্ত্রীদের ২০১০-র প্রথম অর্ধে মন্ত্রী পর্যায়ে যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক করানোর জন্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৻’ মাসকয়েক আগের সেই আলাপ-অলোচনায় বিশেষ কোনও ফল পাওয়া যায়নি৻ তার মধ্যেই কি করে অর্ন্তবর্তী চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত হয়ে গেলো তা কেউই বুঝে উঠতে পারছেন না৻ তিস্তার পানি বন্টন যে একটা অত্যন্ত জটীল বিষয় ভারতের কূটনীতিবিদ ও জল সম্পদ বিশেষজ্ঞরা তা স্বীকার করেন৻ এর কারণ, দীর্ঘ সময়ে ধরে তিস্তার প্রবাহ সম্পর্কে দু-দেশ একমত হতে পারেনি ৻ দু-দেশ আলাদা আলাদা ভাবে নিজেদের মতো করে পৃথক সমীক্ষা করেছে,কিন্তু মতের কোনও মিল তাদের কখনও হয়নি৻ কিছুদিন আগে বিবিসি কে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত ভীণা সিক্রি বলেছিলেন, দু দেশের ��লপ্রবাহ সমীক্ষার ফলাফলে ব্যাপক ফারাক থাকার কারণেই তাদের মতের মিল কখনও হয়নি৻ “আমি অসংখ্য বৈঠকে উপস্থিত থেকে দেখেছি, দুটি বিষয়ে দু দেশের বক্তব্যে বিরাট ফারাক রয়েছে৻ ‘‘বারো-তেরো বছরের তিস্তার জলপ্রবাহ সমীক্ষার গড় দু-দেশ মিলিয়ে দেখেছে৻ তা করে সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিসংখ্যানে দু-দেশ উপনীত হয়েছে৻‘‘ ভীণা সিক্রির মতে এই ফারাক দূর করতে, পৃথক নয়, যৌথ জলপ্রবাহ সমীক্ষা করার প্রয়োজন রয়েছে৻ দিল্লীতে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এই সমীক্ষা করার কথাও হয়েছিলো৻ স্থির হয়েছিলো তা করা হবে মালদার গাজলডোবায়৻ যে কারণে পশ্চিমবঙ্গের সেচ মন্ত্রী কিছুটা হতাশ গলায় বললেন, “এই যৌথ সমীক্ষা না করেই কি করে বিষয়টা মিটে গেলো আমার জানা নেই৻ খবর নিয়ে দেখছি৻‘‘ বাংলাদেশ এবং ভারত, দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের বিশেষজ্ঞ কমিটি তিস্তা নদীর পানি বন্টনের ব্যাপারে পনেরো বছর মেয়াদের অন্তর্বর্তীকালীন একটি চুক্তির খসড়া চুড়ান্ত করেছে। +text: শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটের আজ বৃহস্পতিবারের দৃশ্য আগামীকাল শুক্রবার দেশটিতে মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ উল ফিতর পালিত হবে। লকডাউন ও সরকারি বিধিনিষেধের কারণে দূরপাল্লার যানবাহন, যাত্রীবাহী লঞ্চ এবং রেল বন্ধ থাকায় ঈদের আগে বাড়ি ফেরার নিয়ে গত এক সপ্তাহ যাবত দেশটিতে নানা ঘটনা ঘটে চলেছে। পরিবহণ সংকট থাকলেও নানা উপায়ে হাজারো মানুষের জনস্রোত অব্যাহত আছে দেশের বিভিন্ন দিকে যাওয়ার ফেরিঘাটগুলোতে। সবশেষ বুধবার দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে যাওয়ার পথে ফেরিতে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া থেকে মাদারীপুরের বাংলাবাজারে যাওয়ার সময় প্রচণ্ড ভিড়ে মারা গেছে পাঁচজন। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: ফেরির ভেতরে - বাইরে মানুষ আর মানুষ তবে মুন্সিগঞ্জের সাংবাদিক মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল বলছেন, আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কম হলেও বৃহস্পতিবারও ফেরিগুলোতে ব্যাপক ভিড় দেখা যাচ্ছে যাত্রীদের। যাত্রীদের সাথে এই ফেরিঘাটে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যাও বিপুল পরিমাণে বেড়েছে । তবে ঘাটে বিজিবি কাজ করছে যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা আর না ঘটে, বলছিলেন তিনি। অন্যদিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটেও ভিড় থাকলেও ফেরি স্বল্পতা দেখা যায়নি বলে যাত্রীরা সহজেই ফেরি পাচ্ছিলেন। যদিও ঝড়ের কারণে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বন্ধ আছে ফেরি চলাচল। তবে বু���বারই মোটর সাইকেল, ব্যক্তিগত গাড়ী, ছোট ছোট যানবাহন ও পায়ে হাঁটা হাজার হাজার মানুষের প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছিলো পাটুরিয়া অভিমুখী সড়কে। যদিও আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় একুশটি জেলায় যাওয়ার এই রুটে খুব বেশি চাপ দেখা যাচ্ছেনা। ফেরিঘাটে মানুষ আর মানুষ অন্যদিকে যমুনা সেতু হয়ে উত্তরবঙ্গে যাচ্ছে হাজার হাজার যানবাহন। বুধবার এ সেতু দিয়ে যান পারাপারের রেকর্ড হয়েছে অর্থ আয়ের দিক থেকে। ওই সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক আছে বলে খবর পাওয়া গেছে। মূলত ট্রাক, মাইক্রোবাস, মোটর সাইকেলসহ স্থানীয় ছোট যানবাহনই চলছে সড়কে। যদিও গত দুদিন এ সড়কে যানবাহনের প্রচণ্ড চাপ ছিলো ও কোথাও কোথাও দীর্ঘ যানজটের খবর এসেছিলো। ওদিকে দ্বিগুণ তিনগুণ দামে টিকেট নিয়ে বাড়ী যেতে অভ্যন্তরীণ আকাশপথে ভ্রমণ করছেন অনেকে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা হয়ে বরিশাল এসেছেন আমিনুল ইসলাম। তিনি বলছেন, "দুটি রুটেই ঈদের স্বাভাবিক সময়ে যেরকম ভাড়া বাড়তো এবার তার দ্বিগুণেরও বেশি টাকায় টিকেট নিতে হয়েছে"। অন্যদিকে বরিশাল থেকে ঢাকায় এসেছেন নাজমুল আলম। তিনি বলছেন, ঢাকায় আসার যাত্রীর বেশি চাপ না থাকলেও স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ টাকায় টিকেট কিনতে হয়েছে। বাংলাদেশে ঈদ উল ফিতরকে সামনে রেখে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলগামী মানুষের ব্যাপক ভিড় অব্যাহত আছে, তবে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আরও সক্রিয় হয়েছে বিজিবিসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। +text: টুইটারে সাকিবের অনুসারী ১৪ লাখ বাংলাদেশে ফেসবুক যতটা, টুইটার সেই তুলনায় এখনো তেমন জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। কিন্তু তারপরও, বাংলাদেশে টুইটারে মানুষ সবচেয়ে বেশি অনুসরণ করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে। তাদের অনুসারীর সংখ্যা ২০ লাখের মত। তারপরই মানুষ নজর রাখছে শীর্ষ ক'জন ক্রিকেটারের ওপর। ফলোয়ার বা অনুসারীর সংখ্যার বিচারে টুইটারে শীর্ষ দশের চারজনই ক্রিকেটার। সাকিব আল হাসনকে ফলো করেন ১৩ লাখেরও বেশি মানুষ। মুশফিকুর রহিমের অনুসারী ১০ লাখেরও বেশি, তামিম ইকবালের সাড়ে সাত লাখ এবং মুস্তাফিজুর রহমানের অনুসারী ছয় লাখের বেশি। ক্রিকেটের বাইরে একজন মাত্র বাংলাদেশী টুইটারে শীর্ষ দশের তালিকায় রয়েছেন -গণজাগরণ মঞ্চের ইমরান এইচ সরকার। তার ফলোয়ারের সংখ্যা সাড়ে তিন লাখের মত। সোশ্যালবেকারস নামে একটি আন্তর্জাতিক মার্কেটিং প্রতিষ্ঠান এই পরিসংখ্যান দিয়েছে। ফেসবুকে বিসিবির অনুসারী প্রায় এক কোটি ২০ লাখ। ফেসবুকে বাংলাদেশের শীর্ষ ক্রিকেট তারকাদের ফলোয়ারের সংখ্যা টুইটারের কয়েক গুণ বেশী। ফেসবুকে সাকিবের ফলোয়ার এক কোটি ছাড়িয়ে গেছে অনেক আগেই। মুশফিকের অনুসারী প্রায় কোটি ছুঁই ছুঁই। মাশরাফির প্রায় ৮৫ লাখ। বাংলাদেশে টুইটারে ক্রিকেটারদের বাইরে মানুষজন সবচেয়ে বেশি অনুসরণ করে মিডিয়াকে। সবচেয়ে বেশি অনুসারী বাংলা দৈনিক প্রথম আলোর, তারপরই বিবিসি বাংলার। বাংলাদেশে মাঠে যেমন, সোশ্যাল মিডিয়াতেও সবচেয়ে বড় তারকা দেশের ক্রিকেটাররাই। +text: লন্ডনের রাস্তায় ভোটাধিকারের দাবিতে মেয়েদের মিছিল চিঠিটার নীচে স্বাক্ষর করা হয়েছিল "একজন ইংলিশম্যান' নামে। ১৯১৩ সালের জুনে এমিলি উইল্ডিং ডেভিডসন যখন হাসপাতালের মৃত্যু শয্যায়, তখন তার কাছে এই চিঠি আসে। এমিলি ডেভিডসন ছিলেন মেয়েদের ভোটাধিকারের আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী। এর কয়েকদিন আগে তিনি ইংল্যান্ডের এপসমে যে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা হয়, যেখানে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যরা থেকে শুরু করে অভিজাত সমাজের মানুষেরা ভিড় করেন, সেখানে ভোটাধিকার চেয়ে বিক্ষোভ করতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তার ওপর রাজার ঘোড়া চালিয়ে দেয়া হয়েছিল। গুরুতর আহত এমিলি ডেভিডসনকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়। তার জ্ঞান আর ফেরেনি। সেখানেই ৮ই জুন মারা যান তিনি। মেয়েদের ভোটাধিকারের আন্দোলন এক নতুন বাঁক নিয়েছিল তার মৃত্যুর ঘটনায়। ভোটাধিকার আন্দোলনের নেত্রী এমিলি প্যাংকহার্স্ট এক সভায় বক্তৃতা করছেন এমিলি ডেভিডসন হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায় শুয়েও তাকে গালাগালি দেয়া যে ধরণের চিঠি পেয়েছিলেন, তা থেকে স্পষ্ট কিরকম ঘৃণা, বিদ্বেষ এবং হুমকির মোকাবেলা করতে হচ্ছিল ভোটাধিকারের আন্দোলনে সামিল হওয়া নারীদের। এসব চিঠি সম্প্রতি উন্মুক্ত করা হয়েছে আগ্রহী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য, যারা এই আন্দোলনের ইতিহাস জানতে চান। দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক বিশ শতকের শুরুতেও ব্রিটেনে মেয়েদের অবস্থা ছিল দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকের মতো। পুরুষদের তুলনায় তাদের স্বাধীনতা এবং অধিকার ছিল সীমিত। ভোটের অধিকারের জন্য মেয়েদের তখন লড়াই করতে হচ্ছিল। তারা ধরণা দিচ্ছিলেন, দরখাস্ত লিখছিলেন। সভা করছিলেন। কিন��তু এভাবে যে কিছুই হবে না, সেই উপলব্ধি প্রবল হতে শুরু করলো অনেকের মধ্যে। তারা 'ডাইরেক্ট অ্যাকশনের' মাধ্যমে সরাসরি রাস্তায় নেমে অধিকার আদায়ের পক্ষে। তাদের নেত্রী ছিলেন এমিলি প্যাংকহার্স্ট। ভোটাধিকারের দাবিতে তখন নিয়মিত লন্ডনের রাস্তায় মিছিল চলছিল ব্রিটেনের ডেইলি মেইল পত্রিকা মেয়েদের ভোটাধিকার আদায়ের এই জঙ্গী গোষ্ঠীটির নাম দিয়েছিল 'স্যাফ্রাজেটস'। সেই নামেই তারা পরিচিত হয়ে উঠলেন, কিন্তু বদলে দিলেন ইতিহাস। ভোটাধিকার আদায়ের আন্দোলনে তারা দু:সাহসিক সব কাজ করতেন। বাড়িঘরের ওপর হামলা চালাতেন। নিজেদের শেকল দিয়ে বাড়ির রেলিং এর সঙ্গে আটকে রাখতেন। ব্রিটেনের পত্রিকাগুলো এবং জনমত তাদের বিপক্ষে চলে যাওয়ার ঝুঁকি ছিল। ব্রিটেনের ন্যাশনাল আর্কাইভে সংরক্ষিত দলিলপত্র ঘাঁটলে বোঝা যায় কিভাবে রাষ্ট্র এই আন্দোলন দমনের চেষ্টা করেছিল। স্যাফ্রাজেটরা বাড়ির জানালার কাঁচ ভাঙ্গতো, টেলিগ্রাফের তার কেটে দিত, লেটার বক্সের ভেতর দিয়ে রাসায়নিক বোমা ফেলে দিয়ে আসতো। পুলিশ ব্যাপক হারে তাদের ধরপাকড় করে জেলে ভরতো। জেলে বন্দী নারীরা যখন অনশন ধর্মঘটে যেতেন, তখন তাদের জোর করে খাওয়ানো হতো। শেষ পর্যন্ত এই আন্দোলনের জয় হলো। ব্রিটিশ পার্লামেন্ট আইন করে ত্রিশোর্ধ নারী, যারা বাড়ির মালিক, তাদের ভোটাধিকার দিল ১৯১৮ সালের ৬ই ফেব্রুয়ারী। মেয়েদের ভোটাধিকার আন্দোলনের একটা অংশ ছিল শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের পক্ষে দীর্ঘ লড়াই ১৮৬৬ সালে ব্রিটেনের পার্লামেন্টে প্রথম মেয়েদের ভোটাধিকার চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু ১৯১৮ সালের ৬ই ফেব্রুয়ারী কিছু নারী ভোটাধিকার পেলেও সার্বজনীন ভোটাধিকারের জন্য মেয়েদের অপেক্ষা করতে হয়েছিল ১৯২৮ সাল পর্যন্ত। ১৯১৯ সালে হাউস অব পার্লামেন্টে প্রথম মহিলা এমপি হিসেবে আসন নিয়েছিলেন ন্যান্সি অ্যাস্টর। "তুমি যে হাসপাতালে সেটা শুনে খুব প্রীত হলাম। আমৃত্যু যেন তুমি যন্ত্রণা ভোগ কর সেটাই কামনা করি, নির্বোধ কোথাকার!" +text: ৪৯ ব্যক্তি ও তাদের বাবা-মায়েরা চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছিলেন। কিন্তু তিনি এসব ব্যক্তিদের অনুমতি না নিয়ে নিজেই ৪৯ টি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। সেই চিকিৎসক বছর দুয়েক আগে মারাও গেছেন। এখন ডিএনএ পরীক্ষায় ধীরে ধীরে এসব তথ্য বের হচ্ছে। ঠিক কি ঘটেছিলো? ডাঃ ইয়ান কারবাতের ক্লিনিক ছিল নেদারল্যান্ডসের রটারড্যাম এলাকায়। এসব ক্লিনিকে আসতেন সন্তান নিতে সমস্যা রয়েছে এমন নারী ও দম্পতিরা। ফার্টিলিটি ক্লিনিকের একটি কাজ হল কোন পুরুষের কাছ থেকে তার দান করা শুক্রাণু সংগ্রহ করা। অনেক ক্ষেত্রে শুক্রাণু দানকারীর পরিচয় গোপন রাখা হয়। আবার অনেক সময় চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তিরা শুক্রাণু দানকারীকে নিজেরা পছন্দ করে নিয়ে আসেন। অনেকেই বিষয়টি জানার পর যেন একটি অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি পেলেন। এরপর সেই শুক্রাণু দিয়ে ল্যাবে ভ্রূণ তৈরির পর সহায়তা নিতে আসা ব্যক্তিদের সন্তান জন্মদানে সহায়তা কর হয়। ডাঃ ইয়ান কারবাতে এসব ক্ষেত্রে নিজেই নিজের শুক্রাণু ব্যবহার করতেন বলে এখন জানা যাচ্ছে। তাও আবার চিকিৎসা সহায়তা নিতে আসা লোকজনের কোন অনুমতি ছাড়াই। ঘটনাটি যেভাবে বের হল এই চিকিৎসকের ক্লিনিকে সহায়তার মাধ্যমে জন্ম নেয়া একটি শিশুর চেহারা দেখতে মারাত্মকভাবে মিলে যাচ্ছিলো ডাঃ কারবাতের সাথে। আরো পড়ুন: 'যখন আমার মেয়ের বাবার সঙ্গে দেখা হল ১২ বছর পরে' পুরুষের শুক্রাণু কমে যাচ্ছে, ‘বিলুপ্ত হতে পারে মানুষ’ তিন জনের ডিএনএ থেকে শিশুর জন্ম সেখান থেকেই সন্দেহের শুরু। ২০১৭ সালে তার সহায়তায় জন্মানো ৪৯ ব্যক্তি ও তাদের বাবা ও মায়েরা একই সন্দেহ থেকে আদালতে মামলা করেন। যাদের বেশিরভাগেরই জন্ম ৮০ দশকে। তাদের সন্দেহ হচ্ছিলো এই চিকিৎসকের সাথে তাদের কোন সম্পর্ক রয়েছে। এগারো বছর ধরে নিজের বাবাকে খুঁজেছিলেন মামলাকারীদের একজন। কিন্তু ওই বছরই ৮৯ বছর বয়সে মারা যান সেই চিকিৎসক। এরপর তার বাড়ি ও অফিস থেকে বহু কাগজপত্র জব্দ করা হয়। সেই বছরই ডিএনএ পরীক্ষা সম্পন্ন করে এই ব্যাপারে আদালত জানতে পারে। কিন্তু এতদিন সবগুলো মামলার কার্যক্রম শেষ না হওয়ায় বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের ব্যাপারে কিছু বাধা নিষেধ ছিল। এখন আদালত তথ্য প্রকাশ করার অনুমতি দিয়েছে। এব্যাপারে সন্তানদের প্রতিক্রিয়া এগারো বছর ধরে নিজের বাবাকে খুঁজেছেন তার ক্লিনিকে চিকিৎসার মাধ্যমে জন্ম নেয়া একজন। অবশেষে তিনি জেনেছেন তার বাবা স্বয়ং তার মায়ের চিকিৎসক। তিনি বলছেন, "১১ বছর ধরে খোঁজার পর এখন আমি আমার জীবনে ফিরে যেতে পারবো। একটি অনিশ্চিত অধ্যায়ের অবশেষে সমাপ্তি হল। আমি খুশি যে অবশেষে আমি আমার প্রশ্নের জবাব পেয়েছি।" ডাঃ কারবাত নিজেকে দাবি করতেন 'এসিস্টেড রি���্রোডাকশন' বিষয়ক একজন পথিকৃৎ হিসেবে। যদিও ২০০৯ সালেই তার ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিলো। তার বিরুদ্ধে সেসময় অভিযোগ ছিল তিনি শুক্রাণু দানকারীদের সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। এখন প্রশ্ন উঠছে তার জন্ম দেয়া সন্তানের সংখ্যা হয়ত আরও বেশি হবে। অন্যান্য খবর: জুলিয়ান আসঞ্জ: যে কারণে ক্ষেপেছে একুয়েডর ডায়াবেটিস রোগ হয়েছে জানলে কী করবেন? সড়ক দুর্ঘটনা: ৩০ বছর ধরে চলা ক্ষতিপূরণের আইনি লড়াই নেদারল্যান্ডস এর ঘটনা। সেখানে একজন ফার্টিলিটি চিকিৎসকের কাজ ছিল সন্তান জন্মদানে সমস্যা রয়েছে এমন ব্যক্তিদের ডাক্তারি সহায়তা দেয়া এবং তাদের সন্তান নিতে সহায়তা করা। +text: ধোলাইপাড় চত্বরে ভাস্কর্য তৈরির বিপক্ষে ইসলামপন্থী দলগুলো ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকবার বিক্ষোভ করেছে। বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সুরাহা করতে শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের বিষয়ে আশাবাদী তারা। বিবিসি বাংলাকে এই তথ্য জানিয়েছেন যাত্রাবাড়ী বড় মাদ্রাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ আল ফরিদী । তিনি শনিবারে যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসায় ইসলামী চিন্তাবিদদের বৈঠক এবং পরে যে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়-দুটিতেই উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠক শেষে 'ভাস্কর্য নির্মাণ ইসলামে নিষিদ্ধ' উল্লেখ করে এ বিষয়ে পাঁচ দফা একটি প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। সাথে জানানো হয়েছিল যে, এ বিষয়ে একটি চিঠি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হবে। তারা বলছেন, চিঠি ও প্রস্তাবগুলোর বিষয়ে তাদের একজন নেতা মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করবে। মি. ফরিদী বলেন, যে চিঠি দেয়ার কথা ছিল সেটি তৈরির প্রস্তুতি চলছে। আশা করা হচ্ছে দু-একদিনের মধ্যেই সাক্ষাত অনুষ্ঠিত হবে। তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দেশে একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ধর্মীয় বিভেদ তৈরির চেষ্টা করছে। এক ভিডিও কনফারেন্সে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ইতিহাসের মীমাংসিত বিষয় নিয়ে একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ধর্মীয় বিভেদ তৈরির চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গায়ে পড়ে আক্রমণ করে না কিন্তু আক্রমণের শিকার হলে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে এক বিন্দুও পিছপা হয় না। শুক্রবার জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদ চত্বর থেকে বিক্ষোভকারীরা বের হওয়ার চেষ্টা করলে বাধা দেয় পুলিশ। মি. কাদের বলেন, "বাড়াবাড়ি করলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কর্মীরা ঘরে বসে চুপ করে থাকবে না।" "আমি উগ্রবাদী গোষ্ঠীকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, আপনারা অনেক করেছেন, এনাফ ইজ এনাফ, এবার থামুন।" ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতার জেরে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সে বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, এ বিষয়ে আলোচনা করে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। তবে গণতন্ত্র আর ধর্মনিরপেক্ষতার মতো মূলনীতিকে ভিত্তি করে তৈরি করা সংবিধান অনুযায়ী দেশ চলবে এবং এদেশে থাকতে হলে তা মানতে হবে বলে মন্তব্য করেন মি. হানিফ। তিনি বরেন, "যাদের সংবিধান মানতে অসুবিধা আছে, তাদের এই দেশে থাকার কোন অধিকার আছে বলে জনগণ মনে করে না।" এ বিষয়ে সরকারের একজন মন্ত্রী বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, উদ্ভুত এই পরিস্থিতি সামাল দেয়া নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, সহিংসতার বিষয়গুলো সামাল দিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করবে। "আপনি যখন নিজের হাতে কোন কিছু ভাঙতে যাবেন সেটা তো বেআইনি। আর বেআইনি কোন কিছু ফেস করা সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ।" মি. চৌধুরী মনে করেন, পুরো বিষয়টি নিয়ে সমাধানে আসার পথ হচ্ছে উভয় পক্ষের আলোচনায় বসা। "তারা তাদের দাবি দিচ্ছেন, সেই দাবি নিয়ে আলোচনা হবে, বিতর্ক হবে, এমনকি তারা বড় বড় মাহফিল করবেন। কিন্তু সেখানে সহিংসতা উস্কে দেয় এমন কিছু বলা যাবে না। সব কিছু সমাধানের পথ হচ্ছে আলোচনা করা।" রাজধানী ঢাকার ধোলাইপাড় এলাকায় ভাস্কর্যটি স্থাপনের কাজ শেষের পথে ভাস্কর্য নির্মাণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া ছাড়াও আলেমরা আরও যেসব বিষয়ে প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন তার মধ্যে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে "ইসলামের নবীর প্রতি অবমাননাকর আচরণের ওপর কঠোর নজরদারি ও দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের" দাবি জানিয়েছেন। সম্প্রতি ওয়াজ মাহফিল নিয়ে "শব্দ-দূষণের অজুহাতে লাউড স্পিকার ব্যবহারের ব্যাপারে নির্দেশনা জারি"কে তারা "অনভিপ্রেত" বলেও উল্লেখ করেছেন। বিবিসি বাংলার আরো খবর পড়ুন: মহাশূন্যের রায়ুগু গ্রহাণু থেকে আন�� নমুনা থেকে যা জানা যাবে পোলিওর টিকা নিয়ে যেভাবে পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল কয়েকশ শিশু ভূটানকে যে কারণে সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করতে দিচ্ছে বাংলাদেশ বাংলাদেশে যে ইসলামি চিন্তাবিদরা ভাস্কর্য নির্মাণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন তারা বলছেন এখনও তারা তাদের অবস্থানে অনড় রয়েছেন এবং এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেয়ার প্রস্তুতি চলছে। +text: বৃহস্পতিবার রাত থেকে জঙ্গি আস্তানা ঘিরে অভিযান চলছে এরা হলেন জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম এবং ছাত্রলীগের দক্ষিণ সুরমা উপজেলা শাখার উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জান্নাতুল ফাহিম। বোমা বিস্ফোরণে আহত হয়ে তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। রাত আড়াইটায় জালালাবাদ থানায় যোগাযোগ করা হলে কর্তব্যরত কর্মকর্তা বিবিসিকে জানান মনিরুল ইসলাম রাত ১টা ৫০ মিনিটে ওসমানী মেডিকেলে মারা গেছেন। সিলেট মহানগর পুলিশের কন্ট্রোল রুম থেকে রাত আড়াইটায় জানানো হয়েছে মনিরুল ইসলাম ও জান্নাতুল ফাহিমসহ এ পর্যন্ত মোট ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। আরও পড়ুন : সিলেটে বোমা হামলায় এক পুলিশ সহ নিহত ৪ সিলেটে বোমা 'হামলার দায়' স্বীকার করলো আইএস এর আগে সন্ধ্যায় ও রাতে দু'দফা বিস্ফোরণে একজন পুলিশ কর্মকর্তা সহ চার জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিলেন সিলেট মহানগর পুলিশের মুখপাত্র জেদান আল মুসা। তারা হলেন পুলিশ কর্মকর্তা চৌধুরী আবু ফয়সাল, শিক্ষার্থী ওয়াহিদুল ইসলাম অপু ও ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম। নিহত চতুর্থ ব্যক্তির নাম রেজাউল করিম বলে জানিয়েছেন জেদান আল মুসা। এর আগে বোমা বিস্ফোরনের ঘটনার পর বহু আহত মানুষকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। গুরুতর আহত র‍্যাবের দুজন কর্মকর্তাকে ঢাকায় আনা হয়েছে। সিলেটে জঙ্গি বিরোধী অভিযান স্থলের কাছে বোমা বিস্ফোরণে আরও একজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ নতুন করে আহত দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। +text: অস্থায়ী ঘরের সামনে এক নারী তবে কয়েকজন রোহিঙ্গা বলছেন ক্যাম্পে খাবার, পানি ও থাকার জায়গার সংকটে তাদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। সোমবারের ওই ভয়াবহ আগুনে প্রায় ৪৫ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীর ঘর হারানোর তথ্য দিয়েছিলো জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা। ঘর বাড়ি হারিয়ে নি:স্ব হয়ে পড়া এসব শরণার্থীরা অনেকেই মঙ্গলবার রাত অতিবাহিত করেছেন আশেপাশের এলাকায়। এমনি একজন শরণার্থী নূরজা���ান বলছেন রাত কেটেছে তার খোলা আকাশের নীচে আর আজ সারাদিনে ঠিকমতো খাবারও জুটেনি তার। "আগুনে সব পুড়ে গেছে। আগুনের জন্য কিছুই বের করে আনতে পারিনি, আমাদের গায়ের উপর আগুন এসে পড়ছিল। চুলা, হাঁড়িপাতিল, চাল ডাল, কাপড় চোপড়, সব শেষ, এখন আমাদের কিছুই নাই, সেই সকালে ভাত খেয়েছি আর খাইনি।" এদিকে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় কিংবা নিজ উদ্যোগে অনেকে নিজেদের থাকার জায়গা কাপড় বা বড় পলিথিন দিয়ে চারপাশ বেঁধে মোটামুটি থাকার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করেছেন। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: সশস্ত্র রোহিঙ্গা মুসলিম গোষ্ঠী 'আরসা'র নেপথ্যে কারা? মিয়ানমারে কেন ফিরতে ইচ্ছুক নন রোহিঙ্গারা? 'বার্মিজ ক্যাম্পগুলো হবে খোলা আকাশের নিচে রোহিঙ্গা কারাগার' অনেকে সব হারিয়ে নি:স্ব হচ্ছেন আবার সোমবারের আগুনের ঘটনার পর যেসব পরিবার থেকে তাদের শিশুরা বিচ্ছিন্ন হয়েছে তেমন কিছু পরিবার তাদের শিশুদের ফেরত পেয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে। যদিও সরকারিভাবে এসব বিষয়ে কোন তথ্য দেয়া হয়নি। সালিমা নামে একজন শরণার্থী বলছেন তার বাচ্চাকে ফিরে পেয়েছেন তিনি কিন্তু এখন তার দরকার খাবার ও পানি। "আল্লাহ আমাদের বাঁচিয়েছেন, কোন উছিলায় আল্লাহ আমাদের বাঁচিয়েছে। বাচ্চা দুটোকে খুঁজে পাইনি পরশু থেকে, গতকাল পেয়েছি তাদের। মিডিয়ার লোকজন বাচ্চাকে খুঁজে দিয়েছে, রাতে অনেক কষ্ট করে হাকিম পাড়া গিয়ে থেকেছিলাম। আমার এখন চুলার দরকার, পাতিলের দরকার, চাল দরকার, পানি খাওয়া দরকার। বাচ্চাদের জন্য কাপড় দরকার"। সোমবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া অগ্নিকাণ্ডে প্রায় দশ হাজার ঘর পুরে যাওয়ার তথ্য দেয়া হলেও জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা যে চারশত মানুষের নিখোঁজ থাকার তথ্য দিয়েছিলো সে সম্পর্কে সরকারের তরফ থেকে কোন বক্তব্য এখনো আসেনি। তবে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন আগুনে অনেকেই জীবন বাচাতে এদিক ওদিকে গিয়েছিলো এবং তাদের অনেকেই ফিরে এসেছেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার হাসপাতালগুলোতে আজও চিকিৎসা নিতে আসা মানুষের ভিড় ছিলো। উপরে ত্রিপল দিয়ে তৈরি করা ঘর গতকাল ও আজ ক্যাম্পে গিয়েছিলেন সংবাদকর্মী সালমান সাঈদ। তিনি বলছেন গতকালের তুলনায় আজকের পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হয়েছে বলে মনে হয়েছে তার কাছে। "গতকাল যখন এসেছিলাম তখন রোহিঙ্গাদের সব পুড়ে গেছে। নি:স্ব অবস্থা। হাহাকার চল���িলো। এখন সরকার ও বেসরকারি সংস্থাগুলো খাবার দিতে শুরু করেছে। অনেকে অস্থায়ী ঘর নির্মাণ শুরু করেছেন। সব মিলিয়ে আজ একটু ভালো মনে হচ্ছে। উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলছেন বিপুল সংখ্যক ঘরবাড়ি পুন:নির্মাণসহ ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং তারা আশা করছেন কয়েকদিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। "পুনর্বাসন শুরু হয়েছে। খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জরুরি দ্রব্যাদি দেয়া হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে। এগুলো চলমান থাকবে"। ওদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল আজ রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে কথা বলে তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতার কথা বলেছেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সাথে নাশকতার কোন সম্পর্ক আছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলছেন পুরো ঘটনা তারা খতিয়ে দেখছেন। বাংলাদেশের কক্সবাজারের উখিয়ায় আগুনে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাহায্য সংস্থাগুলোর সহায়তায় অস্থায়ী ঘর নির্মাণ এবং খাবার, পানি ও স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। +text: অভিজিৎ ব্যানার্জী: ভারতের বর্তমান সরকারের অনেক নীতির সমালোচনা করেছেন তিনি বারে বারেই নরেন্দ্র মোদীর নোট বাতিলসহ নানা অর্থনৈতিক পরিকল্পনার কড়া সমালোচনা করেছেন। এছাড়াও মি. ব্যানার্জী যেহেতু নির্বাচনের আগে রাহুল গান্ধীকে দারিদ্র বিমোচনের জন্য 'ন্যায়' নামের একটি প্রকল্প তৈরি করে দিয়েছিলেন, তাই হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো তার এই পুরস্কারপ্রাপ্তিতে কিছুটা নিস্পৃহ বলে মনে করছেন অনেকেই। উদাহরণ হিসাবে বলা হচ্ছে পুরস্কারের ঘোষণার প্রায় চার ঘন্টা পরে কেবল একটি সাদামাটা টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, যিনি সামাজিক মাধ্যমে অন্য প্রায় সব ভারতীয় নেতা নেত্রীর থেকেই এগিয়ে থাকেন। তিনি লেখেন, "অর্থনৈতিক বিজ্ঞানে আলফ্রেড নোবেলের স্মৃতি স্ভেরিয়াস রিক্সবাঙ্ক পুরস্কার পাওয়ার জন্য অভিজিৎ ব্যানার্জীকে অভিনন্দন। দারিদ্র বিমোচনের ক্ষেত্রে তিনি উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন।" মি. মোদীর অনেক দেরীতে অভিনন্দন জানানো নিয়ে যেসব প্রশ্ন উঠছে, তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলাম বিজেপির- পলিসি রিসার্চ গ্রুপের উপপ্রধান অনির্বান গাঙ্গুলির কাছে। "প্রধানমন্���্রী কখন টুইট করবেন সেটাও কি লোক ঠিক করে দেবে? দুঘন্টা পরে না চার ঘন্টা পরে কীভাবে অভিনন্দন জানাবেন, সেটা তো তিনিই ঠিক করবেন! এরকম তো কোনও নিয়ম কোথাও লেখা নেই যে অভিজিৎ ব্যানার্জী পুরস্কার পেয়েছেন বলে আধঘন্টার মধ্যেই অভিনন্দন জানাতে হবে," বলছিলেন মি. গাঙ্গুলি। নোট বাতিলসহ নরেন্দ্র মোদীর নানা অর্থনৈতিক পরিকল্পনার কঠোর সমালোচনা করে এসেছেন নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ ব্যানার্জী। সেকারণেই কি তাকে কটাক্ষ করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে? এ প্রসঙ্গে মি. গাঙ্গুলি বলছিলেন, "সমালোচনা তিনি করতেই পারেন, তিনি তার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কথা বলেছেন, কিন্তু তাই বলে বিজেপি বা তার সহযোগী কোনও সংগঠন তাকে কোনওরকম কটাক্ষ করে নি। কোনও ব্যক্তি যদি করে থাকে, সেটার দায়িত্ব সংগঠনের নয়।" কলকাতার সিনিয়ার সাংবাদিক সুদীপ্ত সেনগুপ্ত আবার মনে করেন সংঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠরা যে অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জীর মতো অর্থনীতিবিদের নোবেল জয়কে ঠিকমতো হজম করতে পারবেন না, এটাই স্বাভাবিক। "যদি সংঘ পরিবারের অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখেন, সেখানে তারা মনে করে যদি বাজার অর্থনীতির অবাধ বিকাশ ঘটে, তাহলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আর অভিজিৎ ব্যানার্জীরা যে অর্থনীতির কথা বলেন, তাতে সবসময়ে তারা উল্টোদিকটা দেখেন, মানুষের হাতে কীভাবে অর্থ আসবে, সেটা নিয়ে ভাবেন। অর্থাৎ দুটো দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুর। তাই পুরস্কার প্রাপ্তির পরে পুরস্কারটাকেই খাটো করে দেখানো হবে, কটাক্ষ করা হবে, এতে আমি অস্বাভাবিক কিছু তো দেখছি না," বলছিলেন মি. সেনগুপ্ত। দারিদ্র বিমোচনে তাদের কাজের জন্য অর্থনীতিতে নোবেল জিতেছেন এসথার ডুফলো-অভিজিৎ ব্যানার্জী দম্পতি হিন্দুত্ববাদী নানা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, এমন ব্যক্তিরা কটাক্ষ করছেন সোমবার থেকেই। কেউ যেমন বলছেন অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কারই নেই, তাই অভিজিৎ ব্যানার্জী নোবেল পেয়েছেন, এমনটা বলা ঠিক নয়। কেউ টেনে আনছেন আরেক নোবেলজয়ী বাঙালী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকেও। মন্তব্য করছেন অভিজিৎ ব্যানার্জী আর অমর্ত্য সেনদের মতো অর্থনীতিবিদদের জন্যই পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতির এই দুর্দশা। কেউ অর্থনীতির নোবেল বলে পরিচিত স্ভেরিয়াস রিক্সবাঙ্ক পুরস্কার যে নোবেল নয়, সেটা প্রমান করার জন্য নানা তথ্য আর ছবি দিচ্ছেন। তবে হিন্দুত্ববাদী কোনও সংগঠনের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে কটাক্ষ করা হয় নি, এটাও মনে করিয়ে দিলেন বিজেপির তাত্বিক নেতা অনির্বান গাঙ্গুলি। দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তণ ছাত্র অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জী। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন বর্তমান অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামানও। ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই অর্থনীতির অধ্যাপাক অমিতশোভন রায় অবশ্য বলছিলেন অভিজিৎ ব্যানার্জী যেসব সমালোচনা করেছেন, সেগুলো রাজনৈতিক সমালোচনা ছিল না - সেগুলো ছিল একজন অর্থনীতিবিদের দৃষ্টিভঙ্গি। "আমি মনে করি না অভিজিৎ ব্যানার্জী সরকারের নানা অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে যেসব সমালোচনা করেছেন, সেগুলোর মধ্যে রাজনীতি ছিল। তিনি একজন অর্থনীতিবিদ, সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই তিনি কথাগুলো বলেছেন। নোট বাতিল নিয়ে তো পৃথিবীজুড়ে বহু অর্থনীতিবিদও বলেছেন। কিন্তু সেগুলো যদি কেউ মনে করেন কোনও তাদের দলের সমালোচনা করছেন অভিজিত, সেটা ভুল হবে," বলছিলেন অমিতশোভন রায়। একদিকে যখন সামাজিক মাধ্যমে অভিজিৎ ব্যানার্জীকে কটাক্ষ করা হচ্ছে, অন্যদিকে ওইসব মন্তব্যকে ট্রলও করা হচ্ছে ব্যাপকভাবে। ট্রলগুলির সুর মোটামুটি একই - বিজেপি সরকারের সমালোচনাকারী অর্থনীতিবিদ নোবেল পেয়ে যাওয়ায় সরকার- সমর্থকদের গাত্রদাহ হচ্ছে, সেজন্যই অনেক দেরীতে প্রধানমন্ত্রীর সাদামাঠা টুইট আর তার সমর্থকদের নোবেল নিয়েই নানান প্রশ্ন! ভারতীয় বংশোদ্ভূত অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জীর নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর তাঁকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনীতির তর্ক। +text: নেতাদের আটকের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মিছিল সংগঠনের আহবায়ক হাসান আল মামুন বিবিসিকে বলেন, গোয়েন্দা পুলিশের উপস্থিতি বুঝে তিনি সময়মত সরে পড়েছিলেন। মূলত এরা চারজনই এই আন্দোলন নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেন, সমাবেশে বক্তৃতা করেন। ছাড়া পাওয়ার পর নুরুল হক কণ্ঠে উদ্বেগ নিয়ে বিবিসিকে বলেন, "ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে। আমরা জীবনের আশঙ্কা করছি, প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা চাইছি.. ।" তিনি বলেন, "আমাদের আটকের খবর দ্রুত মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় চলে আসায় পুলিশ আমাদের আজ ছেড়ে দিয়েছে, কিন্তু তারা আমাদের সহজে ছাড়বে বলে মনে হয়না।" সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ শোনা গেছে আন্দোলনের আরেক যুগ্ম আহবায়ক রাশেদ খানের কণ্ঠে। তিনি জানান, ঝিনাইদহের গ্রাম ��েকে তার কাঠমিস্ত্রি বাবাকেও পুলিশ ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। একটি দৈনিক পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে - রাশেদ খান এবং তার পরিবার জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট। আন্দোলনের অন্য তিন শীর্ষ নেতার অতীতের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়েও লেখা হয়েছে ঐ খবরে। ঘন্টাখানেক আটক রাখার সময় পুলিশ অবশ্য এই ছাত্রদের রাজনীতি নিয়ে কোনো কথা জিজ্ঞেস করেনি। তবে কোটা-সংস্কার আন্দোলনের এই নেতাদের ধারণা- সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার ইস্যু তুলে তাদেরকে বিতর্কিত করতে চাইছে। রাশেদ খান বিবিসি বাংলাকে বলেন, তিনি বা তার পরিবার কখনই কোনো রাজনীতির সাথে ছিলেন না। "দু মাস ধরে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছি, পুলিশ, এনএসআই, ডিজিএফআই আমাদের নিয়ে তদন্ত করে কিছু পায়নি, বলেছে সব ঠিক আছে...এখন হঠাৎ করে আমাদের সব জামাত-শিবির বানানো হচ্ছে।" "আমাকে মেরে ফেলে ফেলুক, কিন্তু আমার পরিবার পর্যন্ত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।" জানা গেছে, ফারুক হাসান, নুরুল হক এবং হাসান আল মামুন - এরা তিনজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত। তারপরও আতঙ্কে পড়ে গেছেন তারা সবাই। নুরুল হক বিবিসিকে বলেন, ফেসবুকে একটি অ্যাকাউন্টের যে সব পোস্টিং-এর কথা উল্লেখ করে রাশেদ খানকে শিবিরের রাজনীতির সাথে যুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে, সেটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট। আসাদুজ্জামান খান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, "বিভিন্ন ভুয়া খবর ছড়িয়ে যারা সাধারণ ছাত্রদের উত্তেজিত করেছে, ভিসির বাড়িতে হামলা চালিয়েছে, তাদেরকে আমরা নজরদারিতে নিয়ে আসছি।" মন্ত্রী বলেন, আন্দোলনের সাথে সাধারণ যেসব ছাত্র-ছাত্রী ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আন্দোলনের নেতাদের সোমবারের আটকের ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, পুলিশ হয়তো জিজ্ঞাসাবাদ করেতে চেয়েছে। "নিশ্চিত না হয়ে পুলিশ কিছু করবে না" - বলেন তিনি। আরও পড়ুন: রাশিয়ার সাইবার যুদ্ধের আশঙ্কায় তটস্থ ব্রিটেন ট্রাম্প 'নৈতিকভাবে' প্রেসিডেন্ট হওয়ার অযোগ্য: কোমি আন্দোলনের নেতাদের নিয়ে তাদের একটি খবর প্রত্যাহার করেছে ইত্তেফাক তোপের মুখে ইত্তেফাক চার শীর্ষ নেতার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বিতর্কিত খবরটি ছাপা হয়েছিল ঢাকার দৈনিক ইত্তেফাকে। ক্যাম্পাসে এবং বিভিন্ন ছাত্রাবাসে দৈনিক ইত্তেফাকের কপি পোড়ানো হয়েছে। ছাত্রদের মিছিলে স্লোগান তোলা হয়েছে। পরপরই দৈনিক ইত্তেফাক তাদের অনলাইন সংস্করণ থেকে খবরটি প্রত্যাহার করে নেয়, এবং দুঃখ প্রকাশ করে। পরে দৈনিকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমা হোসেন বিবিসিকে বলেন, এটা নিয়ে নতুন করে আন্দোলন অশান্তি যাতে না হয়, সে জন্যই তারা খবরটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন। "সত্যতা না থাকলে সেটা দুঃখজনক...তবে সে সময় সন্দেহ ছিল যে এই আন্দোলনকে অন্য দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কিনা। অনেকেই বলেছেন, জঙ্গি বা মৌলবাদীদের সাথে সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে।" "যা রটে তা কিছুটা তো বটেই। তবে খবরটি কতটা ঠিক তা যাচাই করে দেখতে হবে...আমাদের রিপোর্টারের কাছে কিছু তো ছিলই, তবে আরও যাচাই করতে হবে।" যে তিনজনকে - রাশেদ খান, ফারুক হাসান এবং নুরুল হক নুরু - সোমবার গোয়েন্দা পুলিশ ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে থেকে হাত ও চোখ বেঁধে উঠিয়ে নিয়ে যায়, তারা সবাই সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক। +text: গতকাল স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে বিএনপির নয়াপল্টনের কার্যালয়। সর্বশেষ ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল বিএনপি। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি না মানায় দলটি ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করে। এবার দশ বছর পর সেই দাবি আদায় ছাড়াই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে তারা। ইতিমধ্যেই তারা দলীয় মনোনয়নপত্র বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছে। কিন্তু যে দলটি দীর্ঘদিন নির্বাচন বর্জন এবং আন্দোলনের লাইন নিয়ে এগোচ্ছিল - তারা মাত্র মাস দেড়েক পরেই একটি ভোট-যুদ্ধে নামার জন্য কতটা তৈরি? এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড: খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, "বিএনপি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির যে নির্বাচন সেটাতে অংশ না নিলেও পরবর্তীতে স্থানীয় প্রতিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। তাই দীর্ঘদিন যাবত আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করিনি এটা ঠিক না।" "আমাদের দল যেহেতু গণতান্ত্রিক। আমাদের আন্দোলন, সংগ্রাম ও চেতনার উদ্দেশ্য হল একটি নির্বাচনের মাধ্যমে পরিবর্তন আনা। জনগণের অংশগ্রহণ ও মতামতের ভিত্তিতে একটি সরকার গঠন।" "সেই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলেই, এদেশে প্রকৃতপক্ষে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।" আরও পড়তে পারেন: নির্বাচনে অং���গ্রহণ করছি ভগ্ন হৃদয়ে: রিজভী হাসপাতাল থেকে কারাগারে খালেদা জিয়া ৭৫-এর নভেম্বর: ইতিহাসের উত্তাল ও রক্তাক্ত দিনগুলো বিএনপি শুরু থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি শর্ত দিয়েছিল। এসব দাবি দাওয়ার দলের মধ্যে দুটি অবস্থান ছিল স্পষ্ট। এর মধ্যে একটি পক্ষ চেয়েছিল, তাদের দাবিগুলো পূরণের পরেই নির্বাচনে যাওয়া না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া। আরেকদিকে আরেকটি পক্ষ ছিল যারা নির্বাচনে অংশ নেয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। এখন এই নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্তের পর, দলের পক্ষ থেকে যে দাবিগুলো তোলা হয়েছিল সেগুলোর কী হবে? ড: খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, "আমাদের যে সাতটি দফা আছে, সেগুলো আদায়ে আমরা অবিচল আছি। আমাদের নেত্রীর মুক্তি দাবি করছি।" "যদি সরকার এসব দাবি পূরণ না করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো," বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন। "এই নির্বাচনে আমাদের মূল স্লোগান হবে, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, ধানের শীষে ভোট চাই। অর্থাৎ এই ধানের শীষে ভোট চাই একটা আন্দোলনের অংশ।" ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে নতুন জোট। ভোটের মাধ্যমে দেশের জনগণ বাংলাদেশে একটা 'ভোটের বিপ্লব' ঘটাবে বলে আশা করেন তিনি। ভোটের সিদ্ধান্তে দলের মধ্যে যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা গেছে সেটা নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়ার আভাস দেয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। বিবিসিকে তিনি বলেন, "নয়াপল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে একটা উদ্দীপনা, একটা উৎসাহ দেখা গিয়েছে এবং সারাদিন জন জোয়ারের সৃষ্টি হয়েছে।" "এটা থেকে বোঝা যায় যে আমাদের তৃণমূল নেতাদের কর্মীরা চাইছে যে নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়ার জন্য।" এই নির্বাচনের ব্যাপারে তো আওয়ামী লীগ ও তাদের জোটের শরীকরা বেশ আগে থেকেই তাদের প্রস্তুতি শুরু করেছে, মাঠ পর্যায়ে যোগাযোগ শুরু করেছে। কিন্তু বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা এসেছে তফসিল ঘোষণা ঠিক আগ মুহূর্তে। এ অবস্থায় ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো তৃণমূল পর্যায়ে সাংগঠনিক সক্ষমতা বা উপযুক্ত নেতৃত্ব কি বিএনপির আছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে ড: খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, "আমি মনে করি আমাদের সাংগঠনিক শক্তি, জনসমর্থন আমাদের আছে। এবং এই শক্তিকে দাবিয়ে রাখার জন্য সরকার হেন কোন পরিকল্পনা নেই যে নেয়নি।" "আমাদের নেতাকর্মীদের এখনো মামলা দিয়ে গ্রেফতার করছে, আমাদের হাজার হাজার কর্মী জেলে। লাখ লাখ কর্মী মামলার আসামী।" খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে বিএনপি। তারপরেও বিএনপি কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীদের এই উদ্দীপনা দেখে তিনি মনে করেন, গত দশ বছর ধরে সরকারের কোন চেষ্টাই নেতাকর্মীদের মনোবল হারাতে পারেনি। নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে নতুন তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু বিএনপি চেয়েছিল যে সময় আরও পিছিয়ে দেয়া হোক। এ অবস্থায় বিএনপি শেষ মুহূর্ত তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন ড: খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, "নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করায় আমাদের সঙ্গে দুটি সংলাপে প্রধানমন্ত্রী যে আশ্বাস দিয়েছেন, আমরা এখনও সেটা পর্যবেক্ষণ করছি।" "আর আমাদের মহাসচিব বলেছেন, বর্তমানে নির্বাচনের যে পরিবেশ সৃষ্টি করা উচিত, সেটা হচ্ছেনা, ধরপাকড় চলছে। তাতে যদি এটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না হয় তাহলে হয়তো আমরা নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে নতুনভাবে চিন্তা করবো।" তবে এখন পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি। তারপর সকল কিছু দেখে পরিবেশ-পরিস্থিতি দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বাংলাদেশে প্রধান বিরোধীদল বিএনপি ও তাদের দুটি জোটের মিত্র দলগুলোর আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা আসার পর তাদের রাজনৈতিক তৎপরতা নির্বাচনমুখী রূপ নিয়েছে। +text: ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল হরমুজ প্রণালীতে 'ন্যাশনাল পার্সিয়ান গালপ ডে' তে অংশ নিয়েছে ইরানের সেনারা ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, এতেই বেশ পরিষ্কার প্রমাণ রয়েছে। এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, কেমন হতে যাচ্ছে পরবর্তী পরিস্থিতি? যুক্তরাষ্ট্র কিভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে? কিংবা কতটা মারাত্মক হতে পারে ওয়াশিংটন এবং তেহরানের পূর্ণ-মাত্রার বিমান ও নৌ সংঘর্ষ? এ বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করেছেন বিবিসির কূটনৈতিক সংবাদদাতা জনাথন মার্কাস। পেন্টাগনের প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার হামলার শিকার তেল ট্যাংকার দুটির একটি থেকে অবিস্ফোরিত একটি লিমপেট মাইন সরিয়ে নিচ্ছে ইরানি একটি ছোট তরীর ক্রুরা। যাকে এই যুদ্ধে প্রকৃত ঘটনা প্রতিষ্ঠার প্রথম শক্তিশালী অস্ত্র হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে ইরান এবং ট্রাম্প প্রশাসন- উভয় পক্ষের সমালোচনাই বিষাক্ত। গত মে মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে জাহাজে চারটি লিমপেট মাইন হামলার মতোই শুরু থেকেই এ ঘটনার সাথেও সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে ইরান। তবে দুটো ঘটনার জন্যই তেহরানকে দোষারোপ করছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে শঙ্কা দেখা দিয়েছে যে, এই বাকযুদ্ধ শেষ মেষ সংঘাতে রূপ নিতে পারে। আরো পড়ুন: হরমুজ প্রণালী ইরানের কাছে কেন এতো গুরুত্বপূর্ণ? তেলের ট্যাংকারে হামলার পেছনে ইরানের হাত? মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধাতঙ্ক, মক্কায় হবে জরুরী বৈঠক ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য রাখছেন পম্পেও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও দ্রুত ও স্পষ্টভাবেই ইরানের দিকে আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেন, "এই মূল্যায়ন" গোয়েন্দা তথ্য, ব্যবহৃত অস্ত্র, অভিযান পরিচালনায় প্রয়োজনীয় সক্ষমতা, সাম্প্রতিক সময়ে জাহাজে ইরানের হামলা এবং যেহেতু ওই এলাকায় থাকা কোন প্রক্সি গ্রুপের এ ধরণের সূক্ষ্ম অভিযান পরিচালনার মতো সক্ষমতা না থাকার ভিত্তিতে করা হয়েছে। এ অভিযোগ দ্রুতই নাকচ করেছে ইরান। উল্টো এই ঘটনা সাজানো উল্লেখ করে পাল্টা দোষারোপ করেছে দেশটি। ইরানের এক কর্মকর্তা বলেন, "কেউ" ইরানের সাথে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্পর্ক খারাপ করতে চাইছে। অস্বাভাবিক কালক্রম? সাধারণভাবে মার্কিন নৌবাহিনীর ভিডিওটি বিশ্বাসযোগ্যই বটে। কিন্তু এর পরও আসলে অনেক প্রশ্ন থেকে যায়। মার্কিনীদের বর্ণনা অনুযায়ী, প্রাথমিক বিস্ফোরণের কিছু সময় পর এটি রেকর্ড করা হয়েছিলো, যখন কিনা ইরানিরা প্রমাণ মুছে ফেলার চেষ্টা করছিলো। তবে এই হামলার কালক্রম সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ হওয়া দরকার। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কখন এই মাইনগুলো জাহাজে স্থাপন করা হয়েছিলো? ওই এলাকায় শক্তিশালী মার্কিন নৌ উপস্থিতি থাকায় গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের বেশ সক্ষমতা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। তাই আরও তথ্য সামনে আসা উচিত। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজগুলোর ময়না তদন্তও আরও তথ্য উদঘাটন করবে। যাইহোক, মার্কিন এই দাবির প্রভাব আরও অনেক সুদূরপ্রসারী। ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, ইরান ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মিস্টার পম্পেও এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, "পুরো ঘটনা আমলে নিলে বোঝা যায়, এ ধরণের উস্কানিহীন হামলা আন্তর্জাতিক শান্তি ও সুরক্ষার প্রতি হুমকি, নৌ চলাচলের স্বাধীনতার উপর আক্রমণ এবং উত্তেজনা বাড়ানোর অগ্রহণযোগ্য প্রচারণা।" এসব স্থূল অভিযোগের পর প্রশ্ন আসে, এগুলো ঠেকাতে কি ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের? সমন্বিত কুটনৈতিক তৎপরতা হতে পারে এক ধরণের উদ্যোগ, যাতে আন্তর্জাতিক মিলিত নিন্দা জানানোর পাশাপাশি অতিরিক্ত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ইরানকে আরও কোণঠাসা করা যায়। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: মুখ্যমন্ত্রী দাবী মানার পরও ধর্মঘটে অনড় ডাক্তাররা ঈদের মৌসুমে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বাড়ছে কেন? ভাগ্নে অপহৃত, ফেসবুকে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর আল্টিমেটাম বিয়ের রাতে এক নারীর দুর্বিষহ যৌন মিলনের অভিজ্ঞতা ইরানের ইসলামিক রেভ্যূলিউশনারি গার্ডের ১৫০,০০০ সক্রিয় সদস্য রয়েছে তবে এ বিষয়ে খুব একটা সন্দেহ নেই যে, ভুল কিংবা সঠিক, অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা তেহরানের উপর চাপ প্রয়োগ করে বর্তমান পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। রেভ্যূলিউশনারি গার্ড কর্পসের মতো স্বাধীন নৌ-শক্তি পরিচালনাকারী গ্রুপগুলো হয়তো পাল্টা আঘাতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাহলে এখন কি হবে? যুক্তরাষ্ট্র কি শাস্তিস্বরূপ সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার চিন্তা করছে? উপসাগরীয় অঞ্চল এবং তার বাইরে মিত্রদেশগুলো কি চিন্তা করবে? আর সামরিক পদক্ষেপের পরিণতিই বা কি হবে? ভয়ংকর সময় বাস্তবিকপক্ষেই বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে যে, হামলার শিকার হলে ইরান সরাসরি বা তার মিত্র দেশগুলোর সহায়তায় হাইব্রিড যুদ্ধের সূচনা করতে পারে। জাহাজ পরিচালনা ও অন্যান্য টার্গেটে ব্যাপকহারে হামলা শুরু করতে পারে, বাড়তে পারে তেল ও বীমার দাম। যা আসলে আরও শাস্তিমূলক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেবে। তবে কোন পক্ষই এ ধরণের বিপজ্জনক সংঘাতের শঙ্কার বিষয়ে আগ্রহী হবে না। অবশ্য কেউ ভাবে না যে, ইরান বা যুক্তরাষ্ট্র, দুপক্ষই পূর্ণমাত্রার সংঘাত শুরু করতে চায়। আমেরিকানদের জন্য, পর্যাপ্ত সামরিক শক্তি থাকা সত্বেও ইরানের বিরুদ্ধে বিমান ও নৌ হামলা সব ধরনের বিপদ ডেকে আনবে। এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, অনেক সময় অনেক অদ্ভুত সিদ্ধান্ত নিলেও বিদেশে সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়ে ধৈর্যশীল ছিলেন। তার শাসনামলে সিরিয়ায় বিমান হামলা ছিলো মূলত প্রতীকী। এখন শঙ্কা হচ্ছে, পরিস্থিতি না বুঝে হলেও, মার্কিন প��রশাসনে একটা শোরগোল তুলেছে ইরান যা শাস্তিমূলক ব্যবস্থাকে উস্কে দিতে পারে। আসল বিপদ হচ্ছে, পরিকল্পিত নয় বরং দুর্ঘটনা বশত যুদ্ধের সূচনা। তেহরান ও ওয়াশিংটন দুপক্ষই সংকট সমাধানের ইঙ্গিত দিলেও কেউই তা সঠিকভাবে গ্রহণ করছে না। উদাহরণস্বরূপ, উপসাগরীয় এলাকায় মার্কিন অবকাঠামোকে হুমকি হিসেবে দেখতে পারে ইরান। আর নিজেদের দোরগোড়ায় এ ধরণের হুমকি কখনোই সহ্য করবে না তারা। ধরা যাক, এই বার্তাকে ভুল ভাবে নিতে পারে ইরানের রেভ্যূলিউশনারি গার্ড কর্পস। হরমুজ প্রণালী গুরুত্বপূর্ণ একটি সমুদ্রপথ তারা ভাবতে পারে যে, উপসাগরের জলসীমায় মার্কিনীদের তুলনায় বেশি স্বাধীনতা ভোগের অধিকার রয়েছে তাদের। যা মানে না আমেরিকানরা। অন্য কথায় বলতে গেলে, তারা ভাবতে পারে যে, তাদেরকে "জোর করে খামে ঢুকানোর" চেষ্টা চলছে। যার জন্য ওয়াশিংটন ও তার মিত্রদের শাস্তি পেতেই হবে। এটা উদ্দেশ্যমূলক ও উদ্দেশ্যহীন যেকোনো ধরণের সংঘাত উস্কে দেয়ার রেসিপি। এগুলো খুবই খারাপ সময়। জার্মানি আর ফ্রান্সের মতো ওয়াশিংটনের মিত্ররা এরইমধ্যে সাবধানতার আহ্বান জানিয়েছে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাজ্য যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বাস করে। তবে এক্ষেত্রে নিজের উপসংহার নিজে টানতে চায় তারা। "আমরা আমাদের আলাদা মূল্যায়ন করবো, এ বিষয়ে আমাদের নিজেদের প্রক্রিয়া রয়েছে", বিবিসির টুডে অনুষ্ঠানকে বলেন জেরেমি হান্ট। তিনি বলেন, "আমেরিকার মূল্যায়ন বিশ্বাস না করার কোন কারণ নেই। কারণ তারা আমাদের নিকটতম মিত্র।" তবে যেকোনো পদক্ষেপ মিস্টার ট্রাম্পের হিসাব করেই নেয়া উচিত। তিনি যখন প্রথমে ক্ষমতায় আসেন তখন হোয়াইট হাউসে অনেক এমনকি রিপাবলিকান বিদেশ নীতি বিশেষজ্ঞ ছিলেন যারা তার প্রশাসনের সাথে কাজ করতে চাননি। তাদের অভিযোগ, বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ে ট্রাম্পের মারাত্মক ও অনিশ্চিত পদ্ধতি সংকট ডেকে আনবে। আর অনেক সময় মনে হয়েছে উত্তর কোরিয়া ও সিরিয়ার সাথে সংকট তৈরি হবে। তবে শেষমেশ তা আর হয়নি। এখন হোয়াইট হাউসের উপর নতুন করে সংকট আগত। এর প্রতিক্রিয়া অনুযায়ী মারাত্মক প্রভাব শুধু মধ্যপ্রাচ্যে পরবে না বরং গালফ ও অন্যান্য এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্যবাহী অংশীদার ও মিত্রদের উপর পরবে। যাদের অনেকেই জানেন না যে এই প্রেসিডেন্ট ও তার অনন্য কূটনৈতিক ধারার সাথে কিভাবে মানিয়ে নি���ে হবে। ওমান উপসাগরে দুটি তেলের ট্যাংকারে হামলার ঘটনায়, যুক্তরাষ্ট্র ইরান জড়িত থাকার প্রাথমিক গোয়েন্দা তথ্য দেয়ার পর উপসাগরীয় অঞ্চলে সংকট জোরদার হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ওই তথ্য প্রমাণ করে যে, বৃহস্পতিবারের হামলায় জড়িত ছিল ইরান। +text: ইয়েমেনে যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত এই শিশুটির জায়গা হয়েছে রাজধানীর সানার একটি আশ্রয়কেন্দ্রে। দেশটিতে ৫ লাখের বেশী শিশু এখন খাদ্যের অভাবে অপুষ্টিতে ভুগছে ইয়েমেন থেকে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সমন্বয়ক জেমি ম্যাকগোল্ডরিক বিবিসিকে বলেন, আন্তর্জাতিক সহায়তার অভাবে দেশটিতে এখন শিশুরা ক্ষুধায় মৃত্যুবরণ করতে শুরু করেছে। পুরো দেশের অবকাঠামো ভেঙে পড়েছে, এবং দেশটির অর্ধেক জনগোষ্ঠীই টিকে থাকবার অবলম্বন হারিয়ে ফেলেছে। মি. ম্যাকগোল্ডরিক বলেন, বিশ্ববাসীর এখন উচিত ইয়েমেনকে সাহায্য না করবার জন্য দুঃখিত হওয়া। সৌদি আরব সমর্থিত ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি সরকারের সাথে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহর অনুসারীরা দীর্ঘ এক যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। যুদ্ধাবস্থার দরুন দেশটিতে পণ্যবাহী জাহাজ প্রবেশের উপর সৌদি আরবের বিধিনিষেধ রয়েছে, ফলে সেখানে খাদ্য সাহায্য সরবরাহের সুযোগ খুব সীমিত। এই পরিস্থিতিতে ইয়েমেন ধীরে ধীরে দুর্ভিক্ষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে আরেকটি আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা অক্সফ্যাম। সংস্থাটি সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছে জাহাজ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। একই সাথে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে আবেদন জানিয়েছে ইয়েমেনের জন্য খাদ্য সহায়তা বাড়াতে। জাতিসংঘ বলছে, ইয়েমেন মানবিক পরিস্থিতি যখন ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে, তখন বিশ্ববাসীর যেন সেদিকে নজরই নেই। +text: মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হত্যা, নির্যাতন থেকে বাঁচতে পাচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস. ক্যানাডিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশন ও অলাভজনক সংস্থা ফর্টিফাই রাইটস বলেছে, উত্তর রাখাইন প্রদেশে এই দুজন সৈন্য বহু গ্রামবাসীকে হত্যার পর গণকবর দেয়ার স্বীকারোক্তি দিয়েছে এবং যে ভিডিওতে এই স্বীকারোক্তি তারা দিয়েছে, সেটি এ বছরই মিয়ানমারে ধারণ করা হয়েছে। গণমাধ্যমগুলোর উদ্ধৃত করা এই ভিডিও রয়টার্স দেখেনি বলে জানাচ���ছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস বলেছে তাদের পক্ষে ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে চেয়ে রয়টার্সের করা ফোন কলে কোন সাড়াও দেয়নি মিয়ানমারের সরকার এবং সেনাবাহিনীর মুখপাত্র। খবরে বলা হয়েছে. এই দুজন সৈন্য বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হেফাজতে ছিল। গোষ্ঠীটি রাখইনে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়ছে। আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকা অবস্থাতেই স্বীকাারোক্তি দেয় তারা। পরে তাদের নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তারা সাক্ষী হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে কিংবা বিচারের মুখোমুখি হতে পারে। রয়টার্স বলছে, খবরে এটা স্পষ্ট নয়, এই দুজন কী করে আরাকান আর্মির হাতে ধরা পড়লো, কেন তারা কথা বললো এবং কীভাবে এবং কার দায়িত্বে তারা দ্য হেগে পৌঁছালো। আরো পড়ুন: রোহিঙ্গা: মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার অভিযোগ কেন? গণহত্যা রোধে ব্যবস্থা নিন, মিয়ানমারকে আইসিজে রোহিঙ্গা গণহত্যার প্রমাণ নিয়ে দ্য হেগে বাংলাদেশ দল নেদারল্যান্ডস-এ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসির একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেছেন, তাদের হেফাজতে এই দুজন নেই। "না, এই খবরগুলো সত্য নয়। এই ব্যক্তিরা আইসিসির হেফাজতে নেই", রয়টার্সকে বলেন ফাদি এল আবদাল্লাহ নামে এই মুখপাত্র বলেন। আইসিসিতে অভিযোগকারী পক্ষ বাংলাদেশের আইনজীবী পায়াম আখাভান, যিনি মূলতঃ একজন কানাডিয়ান আইনজীবী, তিনি বলেন, ''ওই দুই ব্যক্তি সীমান্তের চৌকিতে এসে তাদের সুরক্ষা দেয়ার জন্য আবেদন করেন এবং ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা এবং ধর্ষণের বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেন। ''তবে আমি এটুকুই বলতে পারি, এই দুই ব্যক্তি এখন আর বাংলাদেশে নেই,'' রয়টার্সকে তিনি বলেন। আর আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইন থু খা বলেন, এই দুজন যুদ্ধবন্দী ছিলেন না। তবে তারা কোথায় আছেন সেই প্রসঙ্গে খোলাসা করে কিছু বলেননি। শুধু এটুকু বলেন, তারা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন পীড়নের শিকারদের 'ন্যায়বিচারের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ'। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা মুসলমানদের গণহত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগ সবসময়ই নাকচ করে মিয়ানমার। তাদের দাবি, তারা ২০১৭ সালে শুধুমাত্র সেইসব রোহিঙ্গা জঙ্গির বিরুদ্ধেই অভিযান পরিচালনা করেছে, যারা পুলিশের চৌকিতে হামলা করেছে। রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বাংলাদেশে যেতে বাধ্য করা, নিপীড়ন ও অন্যান্য মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের তদন্ত করছে আইসিসি। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে। তবে এখনো সেখানে কোন সুনির্দিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়নি বা সাক্ষ্যও গ্রহণ করা হয়নি। আইসিসির কৌঁসুলির অফিস থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "চলমান তদন্ত সম্পর্কে জল্পনা বা খবরের উপর কোন প্রকাশ্য মতামত তারা করে না। চলমান তদন্ত কর্মসূচীর কোন সুনির্দিষ্ট দিক নিয়ে আলোচনাও করে না।" বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: হেফাজতে মৃত্যুর ঐতিহাসিক রায়, ৩ পুলিশকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড নেত্রকোনায় ট্রলারডুবিতে বহু মৃত্যুর আশঙ্কা মসজিদ বিস্ফোরণ: তিতাসকে এখনই নগদ ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ অংশগ্রহণকারী অসুস্থ, অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের ট্রায়াল স্থগিত দুটি সংবাদমাধ্যম ও একটি মানবাধিকার সংস্থার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, মিয়ানমারের দুজন পক্ষ ত্যাগকারী সৈন্য রোহিঙ্গা গণহত্যার স্বীকারোক্তি দেবার পর তাদের দ্য হেগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। +text: যৌন নির্যাতন সহ নানা নির্যাতনের অভিযোগ সিয়ে বাংলাদেশি নারীরা দেশে ফিরছেন (প্রতীকী ছবি) সন্তানকে পরিবারের কাছ রেখে তিনি যখন বাংলাদেশ ছাড়েন তখন কথা ছিলো সৌদিতে কাজ করে প্রতি মাসে এক হাজার রিয়াল অর্থাৎ বাংলাদেশী টাকায় ২০/২২ হাজার টাকা দেয়া হবে তাকে। আর কাজ বলতে এক বয়স্ক ব্যক্তির দেখভাল করা হবে তার কাজ। কিন্তু সেখানে পৌঁছে দেখেন অবস্থা ভয়াবহ। "খুব খারাপ অবস্থা। যা শুনে গেলাম আর গিয়ে দেখলাম পুরো উল্টো। বলেছিলো এক হাজার রিয়াল বেতন হবে, বাংলাদেশী ২০/২২ হাজার টাকা। গিয়ে দেখি ৮০০ রিয়েল বেতন। তাও এক মাসের বেতন দিতে ২/৩ মাস নেয়। বেতন চাইলেই মারধর করে। খাবার দাবার দেয়না। নিজে খাবার তৈরি করলেও ফেলে দেয়। বাসায় যোগাযোগ বন্ধ"। তিনি বলেন, ভেবেছিলাম অবস্থা একটু ভালো হবে সৌদি আরব গেলে । ৫০/৬০ হাজার টাকা খরচ করে গিয়েছিলাম। "কিন্তু এক বাসায় থাকার পর উনারা মারধর করেন। ওনাদের হয়না। অনেক কাজ। এটা সত্যি, যে কাজ করতে গেছি কিন্তু আমি বিক্রি হতে যাইনি। তারা একজনের কাছে আরেকজনের কাছে বিক্রি করে দিলো"। তিনি জানান, প্রথমে এক বাসায় কাজ করার পর তাকে বিক্রি করে দেয়া হয় আরেকটি বাসায়। সেখানেও ব্যাপক নির্যাতনের শিকার হন তিনি। "আমার হাতে পায়ে স্পট আ��ে। আমার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। লাঠি দিয়ে পেটাইছে। মারধর করতে করতে পা ভেঙ্গে ফেলে। এরপর আবার বিক্রি করে। সেখান থেকে পালাতে গিয়ে মেরুদণ্ড ভেঙ্গে যায়। পায়ে পিঠে যন্ত্রপাতি আমার"। সৌদি আরব থেকে ফিরে আসা অনেকে যৌন হয়রানির অভিযোগ করছেন কিন্তু সৌদি আরবের মতো জায়গায় পালানো খুব কঠিন -এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, "পালাইতে চেষ্টা করেছি, কিন্তু সেখানে কি সুযোগ আছে? জানালা থেকে লাফ দিতে গেছি পরে মেরদণ্ডের হাড় ভেঙ্গে যায়। পরে লোকজন হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমার পায়ের গোড়ালি ভেঙ্গে গেছে। মেরুদণ্ড ভেঙ্গে গেছে। দু মাস হাসপাতালে ছিলাম। পরে দূতাবাসে (সেফ হাউজে) চারমাস ছিলাম। এরপর দেশে ফিরে আসা"। ওই নারী জানান সৌদি আরবে তিনি ১৪ মাস ছিলেন এর মধ্যে সেফ হাউজের চার মাস বাদ দিয়ে বাকী সময়ে দুটি বাসায় কাজ করে এখন তিনি প্রায় পঙ্গু। "পরিবারের মহিলা পুরুষ সবাই নির্যাতন করতো। যেমন নির্যাতন হইছে তাতে বাঁচতে হলে লাফ দেয়া ছাড়া উপায় কি?বাঙ্গালি মেয়েদের ইজ্জতের তো দাম আছে"। এই নারীর সাথে প্রায় একই সময়ে দেশে ফিরে আসা আরেক নারী (যিনি তার নাম প্রকাশ করতে রাজী হননি) জানান তাকে বলেছিলো সৌদি আরবে গিয়ে নিজের বাড়ির মতো করে কাজ করবেন। "একমাস ছিলাম ভালো। তারপরের সময় খারাপ। তাদের ইচ্ছেমতো দিনে রাতে কাজ করতে হতো। ছেলেরা খুব খারাপ। গায়ে হাত তোলা, নির্যাতন করতো খুব"। প্রায় দেড় বছরের সৌদি জীবনের শেষ চার মাস তারও আশ্রয় হয়েছিলো বাংলাদেশ দূতাবাসের সেফ হাউজ। তিনি বলেন সেখানে প্রায় চার শতাধিক নারী তিনি ওই সেফ হাউজে দেখেছেন যাদের পর্যায়ক্রমে দেশে নিয়ে আসা হচ্ছে। এক সন্তানের জননী এক নারী পরিবারের অভাব অনটনের ঘোচানোর স্বপ্ন নিয়ে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন কাজ করবেন বলে। +text: ভারতের বান্ধবগড় অভয়ারণ্যে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার বলা হচ্ছে, বাঘের সংখ্যা বেড়েছে সুন্দরবনেও - যে অরণ্য ছড়িয়ে আছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের দুপাশেই। আজ বিশ্ব বাঘ দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতকে বাঘেদের জন্য 'বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বাসভূমি' বলেও বর্ণনা করেছেন। তবে সম্প্রতি যেভাবে ভারতের নানা প্রান্তে বনভূমি সঙ্কুচিত হচ্ছে এবং মানুষ ও বাঘের মধ্যে সংঘাতের ঘটনা ঘটছে, তাতে বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞরা অনেকেই এই বাঘশুমারির পরিসংখ্যান নিয়ে সন্দিহান। বলিউডের ব্লকবাস্টার সিনেমার নাম ধার করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এদিন বলেন 'এক থা টাইগার' থেকে শুরু করে ভারত এখন 'টাইগার জিন্দা হ্যায়' পর্বে পৌঁছে গেছে। আরো পড়তে পারেন: সুন্দরবনে আটটি বাঘ বেড়ে যাওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ বন্যা থেকে বাঁচতে বাড়িতে ঢুকে বিছানায় ঘুম বাঘিনীর বাঘ-সিংহ বা জিরাফ কি একদিন বিলুপ্ত হয়ে যাবে? ভারতের বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং এই সাফল্যের কাহিনী এখানেই থামছে না। এই টাইগার সেন্সাসের ফলাফল প্রত্যেক ভারতীয় ও পরিবেশপ্রেমীকে গর্বিত করবে বলে জানিয়ে তিনি ঘোষণা করেন, "২০১০ সালে সেন্ট পিটার্সবার্গ সম্মেলনে বিশ্বে বাঘের সংখ্যা ২০২২ সালের মধ্যে দ্বিগুণ করা হবে বলে যে টার্গেট ধরা হয়েছিল, ভারত সেই লক্ষ্যে পৌঁছে গিয়েছে চার বছর আগেই।" কিন্তু মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যে ভারতে বাঘের সংখ্যা কীভাবে এক-তৃতীয়াংশ বেড়ে ২৯৬৭তে পৌঁছে গেল? বিষয়টি ব্যাখ্যা করে ভারতের বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বিবিসিকে বলছিলেন, "খুব যত্নের সঙ্গে পুরো বিষয়টি পরিচালনা করা হয়েছে।" "পোচিং বা চোরাশিকারও আগের চেয়ে অনেক কমানো গেছে।" আরো পড়তে পারেন: ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কি কমিয়ে দেখানো হচ্ছে? মিল্ক ভিটার দুধের ওপর নিষেধাজ্ঞা স্থগিত পেঁপে পাতার রস, নারিকেল তেল ডেঙ্গু নিরাময়ে উপকারী? শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর কার্যকরী উপায় মানুষখেকো বাঘ অভনি-র দেহ ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নাগপুর, নভেম্বর ২০১৮ "তা ছাড়া আমাদের বনবিভাগের কর্মকর্তাদের আবেগও বিষয়টার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে।" "সারা বিশ্বে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের তিন-চতুর্থাংশ ভারতেই, কাজেই এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা আমাদেরই নিতে হবে - এটা তারা উপলব্ধি করেছেন।" ভারতের সুপরিচিত বাঘ গবেষক গৌরী মাওলেখি কিন্তু মনে করেন, এই সেন্সাস ডেটা বা বাঘশুমারির পরিসংখ্যান ফুলপ্রুফ নয় এবং এতে নানা ত্রুটির অবকাশ আছে। বিবিসিকে নানা দৃষ্টান্ত দিয়ে তিনি বলছিলেন, "গত কয়েক বছরের মধ্যে যেখানে ভারতে বহু টাইগার করিডর নষ্ট হয়েছে, মানুষখেকো বাঘ অভনি-র মতো বাঘ শাবকসহ মারা পড়েছে কিংবা ছত্তিশগড় ও ঝাড়খন্ডে বাঘের বিস্তীর্ণ আবাসভূমি ধ্বংস হয়েছে - সেখানে এই তথ্য অবশ্যই সন্দেহ উদ্রেক করে।" "করবেটে তো গুজ্জররা কোর ফরেস্টকেই হাজার হাজার মহিষের চারণভূমি বানিয়ে ��েলেছে।" গৌরী মাওলেখি "তাদের জীবিকার সঙ্গে সামান্যতম 'কনফ্লিক্ট' হলে বাঘ মারতেও দ্বিধা করছে না - সেখানে কোথাও একটা মারাত্মক ভুল হচ্ছে বলেই আমার বিশ্বাস।" ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় অবশ্য সুন্দরবনের দৃষ্টান্ত দিয়ে বলছিলেন, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে এবারের বাঘ গণনাকে প্রায় নিখুঁত করে তোলা সম্ভব হয়েছে। তার কথায়, "সুন্দরবনে ২০১৪ সালে আমাদের দিকে ৭০-টার মতো বাঘ ছিল, এখন সেটা বেড়ে ৮৬ হয়েছে। আর সীমান্তের দুদিক ধরলে গোটা অঞ্চলটায় ১৮২ কি ১৮৪টার মতো বাঘ আছে বলে আমাদের সার্ভেলেন্সে ধরা পড়েছে।" "বাঘের গণনা দুদিক থেকেই হয়, বাংলাদেশ যেমন করে - তেমনি আমরাও করি। আর এক একটা বাঘ যেহেতু খুব লম্বা পথ পাড়ি দেয় তাই সেখানে স্যাটেলাইট ম্যাপিংয়ের সাহায্যও নেওয়া হয়েছে। "যেখানেই বাঘের গতিবিধি আছে বলে মনে হয়েছে, আমরা সেখানে প্রচুর সংখ্যায় ক্যামেরা লাগিয়েছি।" বলা হচ্ছে বাঘ বেড়েছে সুন্দরবনেও "সেই সব ক্যামেরায় তিন লক্ষেরও বেশি ছবি এসেছে - আর মোট যে হাজার তিনেক বাঘ, তার আশি শতাংশেরই কিন্তু আসল ছবি কিন্তু আমরা ধরতে পেরেছি।" "বাঘের গায়ের ডোরা দাগ পরীক্ষা করে নিশ্চিত করা হয়েছে যাতে একই বাঘকে দুবার গোনা না-হয়। আধুনিক প্রযুক্তিই এটাকে সম্ভব করেছে", বলছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। ভারতের বিখ্যাত টাইগার কনজার্ভেশন অ্যাক্টিভিস্ট বেলিন্ডা রাইট-ও বাঘের সংখ্যা বাড়াকে স্বাগত জানাচ্ছেন। তবে বাঘ বাঁচাতে সরকারের যথেষ্ঠ রাজনৈতিক সদিচ্ছা আছে কি না তা নিয়ে তিনি এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত নন। মিস রাইট বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "যে দিন সরকার এই টাইগার সেন্সাসের চমকপ্রদ ফল প্রকাশ করছে, সেই একই দিনে কিন্তু তেরোটি রেল প্রকল্পকেও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে যেগুলোতে বন বিভাগের ছাড়পত্র লাগবে না।" ভারতে বাঘ সংরক্ষণে সুপরিচিত নাম বেলিন্ডা রাইট "আর এই রেললাইনগুলো সব যাবে বাঘের বাসভূমি বা টাইগার করিডর চিরে।" "তা ছাড়া ভারতে বন্যপ্রাণী বিষয়ক সরকারি সংস্থাগুলোও তাদের গবেষণা বা তথ্য অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করে না।" "সেগুলো নিরপক্ষভাবে যাচাই করারও সুযোগ নেই - সেটাও একটা বড় দুশ্চিন্তার বিষয়", বলছিলেন বেলিন্ডা রাইট। সুতরাং এই টাইগার সেন্সাস নিয়ে পরিবেশবিদদের সন্দেহ ও সংশয় কিছুটা থাকছেই। আর প্রধানমন্ত্রী মোদীর বলছেন, ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশেরই জাতীয় পশু যেখানে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার - বাঘ বাঁচানোর এই লড়াইটা লড়তে হবে দুদেশকে মিলেই। ভারতে সবশেষ বাঘশুমারির ফলাফল প্রকাশ করে সে দেশের সরকার আজ দাবি করেছে, মাত্র ন'বছরের মধ্যে সেখানে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে প্রায় তিন হাজারে পৌঁছেছে। +text: করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশের সব সরকারি অফিসে জীবাণুনাশক টানেল স্থাপনের সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সংক্রান্ত কিছু নির্দেশনা জারি করে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, যেখানে সরকারি অফিসে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জীবাণুনাশক টানেল স্থাপন করার সুপারিশ করা হয়। অথচ ১৬ই এপ্রিল বাংলাদেশের সব জেলার সিভিল সার্জনকে উদ্দেশ্য করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জারি করা এক নির্দেশনায় জীবাণুনাশক টানেল ব্যবহার করে শরীরে সরাসরি জীবাণুনাশক ছিটানো বন্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। ঐ নির্দেশনায় বলা হয়েছিল জীবাণুনাশক হিসেবে ব্যবহৃত রাসায়নিক মানুষের ত্বক, চোখ, মুখে পড়লে ক্ষতি হতে পারে। তবে তার এক মাসের মধ্যেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জীবাণুনাশক টানেল ব্যবহার করার বিপরীতধর্মী পরামর্শে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান জানান এই ধরণের টানেলের কার্যকারিতা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের দ্বিমত থাকায় কর্তৃপক্ষ দুই দফায় দু'রকম নির্দেশনা দিয়েছে। "টানেলের কার্যকারিতা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতের পার্থক্য রয়েছে। তাই প্রথমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর টানেল স্থাপন থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দিলেও পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় তা পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে অফিসে টানেল স্থাপন করা বাধ্যতামূলক নয়, কর্তৃপক্ষ চাইলে টানেল স্থাপন করতে পারে।।" তিনি জানান অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে কিছু সরকারি অফিস এ ধরণের টানেল স্থাপন করেছে, তবে স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি মাথায় রেখে অনেক অফিসই টানেল বসানো থেকে বিরত থেকেছে। জীবাণুনাশক টানেল যেভাবে শরীরের ক্ষতি করতে পারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নির্দেশনা জারি করার পর গত কয়েকদিনে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি থানার প্রবেশপথে জীবাণুনাশক টানেল স্থাপন ক��া হয়েছে, যেসব টানেলের মধ্য দিয়ে পার হওয়ার সময় ব্যক্তির শরীরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জীবাণুনাশক ছিটানো হয়ে থাকে। এছাড়া গত সপ্তাহে বাংলাদেশের কয়েকটি জেলায় সেনাবাহিনীর উদ্যোগেও জীবাণুনাশক টানেল স্থাপন করা হয়। চট্টগ্রামের একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান পুলিশের উদ্যোগে তৈরি করা জীবাণুনাশক হিসেবে টানেলে রাসায়নিক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ব্লিচিং পাউডারের দ্রবণ ও ৩% হাইড্রোজেন পার অক্সাইড সলিউশন। কিন্তু ব্লিচিং পাউডার জীবাণুনাশক হিসেবে কার্যকর হলেও তা সরাসরি মানুষের শরীরের সংস্পর্শে এলে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সুলতানা রাজিয়া বলেন এই ধরণের রাসায়নিকের সংস্পর্শে এলে স্বল্পমেয়াদে ও দীর্ঘমেয়াদে বিভিন্ন রকম স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি হতে পারে। করোনাভাইরাস: বিশ্বে মৃত ও আক্রান্ত কোথায় কত? কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? ব্লিচিং পাউডার জীবাণুনাশক হিসেবে কার্যকর হলেও তা সরাসরি মানুষের শরীরের সংস্পর্শে এলে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে। "যে ধরণের রাসায়নিক এই টানেলে ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলো মানুষের শরীরের সংস্পর্শে আসার কথা নয়।" অধ্যাপক রাজিয়া বলেন, "চামড়ায় জ্বালাপোড়া, ত্বকের বিভিন্ন ধরণের রোগ থেকে শুরু করে চোখের সমস্যা এবং শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা তৈরি হতে পারে এই ধরণের কেমিক্যালের সংস্পর্শে এলে। দীর্ঘদিন ধরে বারবার সংস্পর্শে আসতে থাকলে আরো জটিল সমস্যা তৈরি হতে পারে।" ব্লিচিং পাউডারের মূল উপাদান ক্লোরিন, এবং ক্লোরিন মানুষের জন্য বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে মন্তব্য করেন সুলতানা রাজিয়া। টানেল ব্যবহারে 'উল্টো বিপদের' আশঙ্কা বাংলাদেশের বাস্তবতায় জীবাণুনাশক টানেলের ধারণা বাস্তবায়ন করতে গেলে উপকারের চেয়ে ক্ষতির সম্ভাবনা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লেনিন চৌধুরী। বাংলাদেশের মানুষের সচেতনতার সমালোচনা করে লেনিন চৌধুরী বলেন, "একজন মানুষ শপিং মলে গিয়ে অন��ক মানুষের সংস্পর্শে আসার পর বের হওয়ার সময় টানেলের মধ্যে দিয়ে বের হয়ে এসে নিজেকে জীবাণুমুক্ত মনে করতে পারেন, যেটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা এবং এর ফলে উল্টো বিপদ তৈরি হতে পারে।" "এর ফলে ঐ ব্যক্তির মধ্যে 'ফলস সেফটি'র ধারণা তৈরি হতে পারে তার মধ্যে সতর্কতা কমতে পারে।" তার ওপর ব্লিচিং পাউডার ও হাইড্রোজেন পার অক্সাইড সলিউশন দিয়ে তৈরি রাসায়নিক ব্যবহারের মাধ্যমে এ ধরনের টানেল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত না হওয়ায় এই ধরণের পদক্ষেপ শুধু অপ্রয়োজনীয়ই নয়, জনস্বাস্থ্যের জন্য উল্টো ক্ষতিকর বলে মনে করেন লেনিন চৌধুরী। এছাড়াও দীর্ঘমেয়াদে এসব রাসায়নিক মাটি ও পানিতে মিশে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। "এ ধরণের কয়েক'শো টানেল থাকলে হয়তো তা বড় ধরণের পরিবেশগত ক্ষতি সাধন করতে পারবে না। কিন্তু দেশের অধিকাংশ শপিং মল বা অফিস-আদালতে এগুলো ব্যবহার করা হলে যেই পরিমাণ রাসায়নিক মাটি ও পানিতে মিশবে, তা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর হতে পারে।" করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশের সব সরকারি অফিসে জীবাণুনাশক টানেল স্থাপনের সুপারিশের কারণে উল্টো স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। +text: বাংলাদেশে মোট শনাক্ত হওয়া কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা এখন ১৪৫,৪৮৩ জনে। এই সময়ের মধ্যে নতুন করে ৩,৬৮২ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত হওয়া কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ১৪৫,৪৮৩ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের নিয়ে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা এখন ১,৮৪৭ জন। এর আগে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৬ই জুন। সেদিন ৫৩ জন মারা গিয়েছিলেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৮৪২৬টি। এপর্যন্ত মোট পরীক্ষা হয়েছে ৭৬৬৪৬০ টি। মোট ৬৬ টি পরীক্ষাগারের ফল পাওয়া গেছে। তবে দুটি বেসরকারি পরীক্ষাগারের ফল পাওয়া যায়নি। তাই ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে শনাক্তের হার ১৯. ৯৮ শতাংশ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে এসব তথ্য দিয়েছেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি আরও জানিয়েছেন যে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১,৮৪৪ জন সুস্থ হয়েছেন, ফ���ে সুস্থ হওয়াদের মোট সংখ্যা দাঁড়ালো ৫৯,৬২৪ জনে। যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ৫২ জনই পুরুষ। মৃতদের মধ্যে ৪৮ জনের বয়স ৫১ থেকে ৮০ বছর। করোনাভাইরাস: সুস্থ হয়ে উঠতে কতদিন লাগে? কাদের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে আর কাদের জন্য জরুরি নয় করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় যাদের স্বাস্থ্য সমস্যা আছে তাদের কী করতে হবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে যে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে এ যাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ ৬৪ জন মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। +text: লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম বাংলাদেশের কোন বর্তমান সংসদ সদস্যকে এর আগে কখনো বিদেশের মাটিতে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছে বলে শোনা যায়নি। নির্ভরযোগ্য সূত্রের উল্লেখ করে কুয়েতের ব্যক্তিমালিকানাধীন পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে এই খবর প্রকাশ করা হয়েছে। এই মামলায় কুয়েতের আরও কয়েকজন অভিযুক্ত রয়েছেন, যাদের মধ্যে দেশটির দুইজন আইন প্রণেতাও আছেন। গত ৬ই জুন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেয় কুয়েতের সরকারি কৌঁসুলিরা। সেই সময় তার প্রতিষ্ঠানের একজন হিসাবরক্ষকসহ আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ দেয়া, অর্থ পাচার, মানব পাচার এবং ভিসার অবৈধ লেনদেন করার অভিযোগ আনা হয়েছে। গত ১৫ই জুন আল-কাবাস সংবাদ প্রকাশ করে যে, মোহাম্মদ শহিদ বা কাজী পাপুল নামের এই সংসদ সদস্য তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে তিনি বলেছেন যে, তিনজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে বন্ধুত্বের নিদর্শনস্বরূপ ৫০ হাজার দিনার বা এক লাখ ৬৩ হাজার ৩৮৮ ডলার তিনি উপহার দিয়েছিলেন। এর আগে এই পত্রিকাটি খবর প্রকাশ করে যে, কাজী শহিদের সঙ্গে বিদেশি কর্মীদের পাচারের এসব ঘটনায় কুয়েতের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী এবং কর্মকর্তারাও জড়িত আছেন। বসবাসের অনুমতির অবৈধ লেনদেনের ব্যাপারে কুয়েতের সরকার অভিযান শুরু করার পর এই গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটলো। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: এমপি শহিদকে কুয়েত পুলিশ 'আটক' করেছে নাকি আলোচনায় ডেকেছে? বাংলাদেশে সংসদ সদস্য হলে কী সুবিধা পাওয়া যায়? সংরক্ষিত আসনের সাংসদের কাজ কী? গত ১০ বছরে কী পরিবর্তন এসেছে বাংলাদেশে? কুয়েতের আইন অনুযায়ী, নাগরিকরা বা ��্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশিদের স্পন্সর করতে পারেন এই শর্তে যে, তারা তাদের জন্য কাজ করবেন। তবে নিজেদের প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়ার ইচ্ছা না থাকলেও অনেকে বিদেশি শ্রমিকদের কাফালা বা বসবাসের অনুমতি দেয়ার নামে ব্যবসা করে থাকেন। এর ফলে বিদেশি শ্রমিকরা কুয়েতে কাজ খুঁজতে আসেন, কিন্তু মূল স্পন্সরের কাছে তাদের দায়বদ্ধতা থেকেই যায়। 'কাফালা' নামের এই স্পন্সরশিপ প্রথার সংশোধন করার জন্য আহবান জানিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো। অথবা আইন পরিবর্তনের আহবান জানিয়েছে যাতে বিদেশি শ্রমিকরা তাদের চাকরি পরিবর্তন করতে পারেন অথবা তার স্পন্সরের অনুমতি ছাড়াই দেশ ত্যাগ করতে পারেন। মোহাম্মদ শহিদ ইসলামকে আটকের পর একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম রাজনীতির চমক শহিদ ইসলাম রাজনৈতিক অঙ্গনে অনেকটাই অপরিচিত মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে তাক লাগিয়েছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের সমর্থন আদায় করে। মহাজোটের প্রার্থীই সরে দাঁড়িয়েছিলেন মিস্টার ইসলামকে কেন্দ্রীয়ভাবে তার জোট সমর্থন দেয়ায়। নির্বাচনের পর আরেক চমক ছিলো মিস্টার ইসলামের স্ত্রী যখন সংরক্ষিত মহিলা আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন। এরপর দেশের রাজনীতির চমক এই সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম আবারও আলোচনায় আসেন গত ফেব্রুয়ারিতে যখন কুয়েতের একটি সংবাদপত্রে বাংলাদেশি মানব পাচারকারীদের নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশের জের ধরে। যাকে পরে ভুয়া সংবাদ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। মিস্টার ইসলাম আবারো আলোচনায় যখন বাংলাদেশের গণমাধ্যমে কুয়েতি সংবাদপত্রকে উদ্ধৃত করে প্রচার করা হয় যে মিস্টার ইসলামকে 'মানব পাচারে' জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করেছে কুয়েতের পুলিশ। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: করোনাভাইরাসে বিশ্বে একদিনে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্তের রেকর্ড সীমান্তে মিয়ানমারের সেনাদের টহল বৃদ্ধি, বাংলাদেশের উদ্বেগ বোরকা পরে ক্রিকেট খেলার ভাইরাল ছবি নিয়ে কী বলছেন মা মা-ছেলের ক্রিকেট খেলার ছবিতে বোরকা নিয়ে বিতর্ক যে কারণে মানব পাচারের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশি সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শহীদ ইসলাম ওরফে কাজী পাপুলের বিচার শুরু হচ্ছে ১৭ই সেপ্টেম্বর। +text: মাদকের বিস্তার রোধে হটলাইন সেবা চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দীন আহমেদ বিবিসিকে বলেন মাদক সমস্যা নির্মূলে কর্তৃপক্ষের সাথে জনগণকে সংযুক্ত করাই এই হটলাইন সেবা চালু করার মূল উদ্দেশ্য। "মাদকের বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা কর্তৃপক্ষ যত কঠোর অবস্থানেই থাকুক না কেন, জনগণ নিজে থেকে মাদক নিরাময়ে পদক্ষেপ না নিলে এই সমস্যা পুরোপুরি কখনোই সমাধান করা সম্ভব নয়", বলেন জামাল উদ্দীন আহমেদ। আরো পড়ুন: তিন কেজির বদলে এক কেজি গাঁজা, '৯৯৯' ফোন 'ক্রিস্টাল মেথ বা আইস' শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর? ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন খেলে কী হয় কী ধরণের তথ্য জানানো যাবে? নতুন এই হটলাইন সেবায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ পর্যন্ত মাদক সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ করা যাবে বলে জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। এই হটলাইনের বহুমুখী ব্যবহার হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। "হটলাইনের প্রধান লক্ষ্য, মাদক ব্যবসায়ী সম্পর্কে কোনো তথ্য দেয়া হলে আমরা তা পর্যালোচনা ও যাচাই বাছাই করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।" এছাড়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নিয়মিত যেসব সেবা দিয়ে থাকে, সেগুলোও এই হটলাইনের মাধ্যমে গ্রহণ করতে পারবেন সাধারণ মানুষ। অপব্যবহার রোধে কী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে? বছরখানেক যাবত মাদকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে কয়েকশো'রও বেশি অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ী আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে কথিত 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হয়েছে। অভিযুক্ত অনেক মাদক ব্যবসায়ীকে বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তি দেয়া হয়েছে। তবে বেশকিছু ক্ষেত্রে এরকম অভিযোগ রয়েছে যে ব্যক্তিগত ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে বা প্রতিশোধ চরিতার্থ করতে মাদকের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে নির্দোষ মানুষকে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্যও এরকম কিছু ঘটনায় অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন। নতুন হটলাইন সেবাকে ব্যবহার করে এই ধরণের পরিস্থিতি তৈরি হবে না বলে আশা প্রকাশ করেন জামাল উদ্দীন আহমেদ। তিনি জানান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের গতিবিধি স��্পর্কে নজরদারি করতে বেশ কিছুদিন ধরে একটি সফটওয়্যার ভিত্তিক ব্যবস্থা ব্যবহার করছেন তারা, যার সাহায্য কর্মীদের 'যথাযথ শৃঙ্খলা'র মধ্যে আনার ক্ষেত্রে অনেকটা সফলতা পাওয়া সম্ভব হয়েছে। "ফিল্ড কোর্স মনিটর নামের ঐ সফটওয়্যার ভিত্তিক মনিটরিং সিস্টেমের মাধ্যমে আমাদের কর্মকর্তাদের অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়। তার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি কোন কর্মকর্তা কখন কোথায় রয়েছেন।" মাদকের বিস্তার রোধে আজ বৃহস্পতিবার (২রা জানুয়ারি) থেকে একটি হটলাইন সেবা চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। হটলাইন নম্বরে ফোন করে মাদক সম্পর্কে যে কোনো রকম তথ্য জানাতে পারবে সাধারণ মানুষ। +text: দুবাই সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং দুবাইয়ের নেতা শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম বলেছেন, যোগ্যদের মধ্যে বিনিয়োগকারী, মেধাবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী এবং শিল্পীরা অন্তর্ভুক্ত হবেন। তারা এবং তাদের পরিবার দ্বৈত জাতীয়তা রাখতে পারবে বলে, তিনি জানান। কোন নিম্ন-আয়ের শ্রমিকদের এই কঠোর মানদণ্ড পূরণের সম্ভাবনা কম। শেখ মোহাম্মদ জানান, তাদের লক্ষ্য হল সেইসব মানুষকে আকর্ষণ করা যারা তার দেশের উন্নয়নের যাত্রায় অবদান রাখতে পারবে। এক্ষেত্রে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার নিয়ম নেই, বরং সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজ পরিবার বা কর্মকর্তারাই মনোনীত করবেন যে তারা কাদের নাগরিকত্ব দেবেন, তিনি বলেন। এরপর সংযুক্ত আরব আমিরাতের মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেবেন যে এই মনোনীত ব্যক্তিদের নাগরিকত্বের সুযোগ দেয়া হবে কি না। করোনাভাইরাস মহামারি এবং তেলের দাম পড়ে যাওয়ার মধ্যে দেশটির পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা এলো। সম্প্রতি কয়েক হাজার বিদেশিকে দেশটি ছেড়ে চলে যায়। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: যে সাতটি দেশে এখন বাংলাদেশি কর্মীরা সবচেয়ে বেশি যায় কেন বিদেশে আটক হন বাংলাদেশের প্রবাসী শ্রমিকরা প্রবাসী শ্রমিকরা চাকরি হারানোয় আর্থিক সংকটে দেশে থাকা পরিবার 'কাফালা' পদ্ধতিতে পরিবর্তনের ঘোষণা, প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য আইন শিথিল উপসাগরীয় এই দেশটি তাদের উন্নয়ন অভিবাসীদের সাধারণত নাগরিকত্ব দেয় না। আবুধাবিভিত্তিক পত্রিকা দ্যা ন্যাশনাল বলছে, নতুন ব্যবস্থার আওতায় বিশেষজ্ঞ এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সুযোগ দেয়া হবে যেন তারা দেশটির গভীর ভিত গড়তে পারে। আর্থিক ও পর্য��ন কেন্দ্র হিসাবে উপসাগরীয় রাজ্যের এই উত্থান পুরোটাই নির্ভর করে প্রবাসীদের ওপর। বিবিসির আরব বিষয়ক সম্পাদক সেবাস্তিয়ান উশার বলেছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে এই প্রবাসীরাই সেখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ বাসিন্দা যাদের ৯০% এর বেশি কর্মক্ষেত্রে যুক্ত। বিদেশি কর্মীদের সাধারণত নবায়নযোগ্য ভিসা দেয়া হয় যা বেশ কয়েক বছরের জন্য বৈধ থাকে এবং সেই ভিসা মূলত চাকরির সাথে যুক্ত থাকে। স্বল্প আয়ের শ্রমিকরা দেশটির অর্থনীতি গড়ে তুলতে, নির্মাণ ক্ষেত্রে, হোটেল ব্যবসা এবং ভ্রমণ খাতে জনবল সরবরাহে মূল ভূমিকা রেখেছে। এই শ্রমিকরা তাদের উপার্জনের বড় অংশ প্রায়শই নিজ দেশে থাকা পরিবারকে পাঠিয়ে দেয়। তাদের মধ্যে অনেকে দেশটিতে কয়েক বছর থাকলেও তাদের নাগরিকত্ব বা স্থায়ীভাবে বসবাসের কোনও আনুষ্ঠানিক সুযোগ দেয়া হয়নি এবং তাদের জন্য কল্যাণমূলক কোন সুবিধা দেয়ারও ব্যবস্থা নেই। স্বল্প-আয়ের শ্রমিকদের যেখানে অবহেলিত রাখা হয়েছে সেখানে সংযুক্ত আরব আমিরাত বিনিয়োগকারী, শিক্ষার্থী এবং পেশাদার কর্মীসহ নির্দিষ্ট কিছু ক্যাটাগরির মানুষদের জন্য দীর্ঘ সময় থাকার সুযোগ করে দিচ্ছে। ২০১৯ সালে শেখ মোহাম্মদ একটি গোল্ডেন কার্ড ভিসা পদ্ধতি চালু করেছিলেন যার আওতায় চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, এবং স্কুলে বেশ ভালো ফল করা শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশাদারদের পরিবারসহ ১০ বছর থাকার সুযোগ দেয়া হয়েছিল। গত বছর আরও বেশি সংখ্যক লোকদের এই সুযোগ দেয়া হয়। ওয়াম নিউজ এজেন্সি প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, নতুন নাগরিকত্ব প্রকল্পের আওতায় বিনিয়োগকারীদের সংযুক্ত আরব আমিরাতে সম্পত্তির মালিক হতে হবে, চিকিৎসকদের এমন কোন একটি ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ হতে হবে যার অনেক চাহিদা রয়েছে, উদ্ভাবকদের সংযুক্ত আরব আমিরাতে থেকে অনুমোদিত পেটেন্ট গ্রহণ করতে হবে এবং সৃজনশীল ব্যক্তিদের তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকায় থাকতে হবে। নতুন পাসপোর্টধারীরা সংযুক্ত আরব আমিরাতের এই জনকল্যাণ ব্যবস্থার আওতায় যোগ্য বিবেচিত হবে কিনা তা এখনও পরিষ্কার নয়। দেশটি তাদের আনুমানিক ১৪ লাখ নাগরিকের জন্য বিনামূল্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, আবাসন ঋণ এবং অনুদানের জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে থাকে। নাগরিকত্ব সাধারণত উপসাগরীয় দেশগুলোর বাসিন্দাদের দেওয়া হয় না। এটি কেবলমাত্র আমিরাতি পুরুষদের স্ত্রী এবং আমিরাতি বাবার সন্তানদের দেওয়া হয়। বিদেশিদের বিয়ে করা আমিরাতি মায়ের সন্তানরা নাগরিকত্ব পায় না তবে পরিবর্তে তাদের আবেদন করতে হয়, এই প্রক্রিয়ায় কয়েক বছর সময় লাগতে পারে। সংযুক্ত আরব আমিরাত বলেছে যে তারা প্রথমবারের মতো বিদেশিদের নাগরিকত্ব প্রদান করবে, বিশেষ করে যারা উপসাগরীয় অঞ্চলের মান উন্নয়নে কাজ করবে। +text: ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় তারা দাবি করেছেন, নির্বাচন কমিশনে বার বার অভিযোগ তুলে ধরার পরও তফসিল ঘোষণার পর থেকে প্রায় এক মাসে তাদের দুই হাজারের বেশি নেতা কর্মীকে গ্রফতার করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন বিনা কারণে কাউকে গেফতার বা পুলিশী হয়রানি না করার ব্যাপারে তাদের নির্দেশের কথা তুলে ধরছে। অন্যদিকে, সারাদেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের মাঝে নির্বাচনকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে দলটির নেতারা বলছেন। দক্ষিণে পশ্চিমে সীমান্তবর্তী যশোরের শার্শা উপজেলায় বিএনপির ভাল সাংগঠনিক অবস্থান রয়েছে। কিন্তু সেই উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান জহির অভিযোগ করেছেন, সেখানে তাদের সাংগঠনিক শক্তি ভাল হলেও নেতা কর্মীরা নির্ভয়ে বা স্বতস্ফূর্তভাবে মাঠে নামতে পারছে না। পুলিশী হয়রানি এবং গ্রেফতারের ভয়ে তারা এখনও একটা গুমোট পরিবেশের মধ্যে রয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। মি: জহির বলেছেন, গত এক সপ্তাহের মধ্যেই নাশকতার নতুন একটি মামলা দিয়ে বিএনপির নয়জন স্থানীয় নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। "শার্শা ছোট একটা উপজেলা। এখানে আমাদের নেতা কর্মীরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। কিন্তু পুলিশ আতংকে আমরা আতংকিত। নাশকতার মামলা হচ্ছে। ফলে আমাদের নেতা কর্মীরা মাঠে নেমে যে ভোট করবে, সেই সাহস পাচ্ছে না।" অন্যদিকে, শার্শা উপজেলাতেই গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা সক্রিয় হয়েছেন। নির্বাচনের প্রচারণাযুদ্ধের প্রস্তুতিতেই তাদের মাঝে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। যেমনটা বলছিলেন এই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল। "দলের নেতাকর্মীরা সকলেই এখন একটা উৎসবমুখর পরিবেশে। প্রতিটি ইউনিয়নে-গ্রামে এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে নেতা কর্মীদের মাঝে যে উৎসাহ, এটা লক্ষ্যণীয়।" বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: নির্বাচনের জন্য কতোটা প্রস্তুত বিএনপি মনোনয়নপত্র বাতিল ���্রার্থীদের নিয়ে কী করবে বিএনপি তিনটি আসনেই খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিল ডিসেম্বরের ৩০তারিখে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকায় আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, সারাদেশেই সবদলের নেতা কর্মীদের মাঝেই ভোট উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে। কিন্তু শার্শা উপজেলার মতই দেশের অন্যান্য নির্বাচনী এলাকাতেও গ্রেফতার আতংক থেকে বিএনপির নেতা কর্মীরা ভোটের মাঠে স্বতস্ফূর্তভাবে সক্রিয় হতে পারছে না বলে ঢাকায় বিএনপির নেতারা বলছেন। তারা মনে করছেন, এধরণের পরিবেশ অব্যাহত থাকলে নির্বাচনী প্রচারণায় এবং এমনকি ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট নিয়োগের ক্ষেত্রেও তাদের সমস্যা হতে পারে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলছিলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে এপর্যন্ত সারাদেশে তাদের দুই হাজারের বেশি নেতা কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। "আইন শৃঙখলা রক্ষাকারী বাহিনী এখনও বেপরোয়াভাবে বিএনপির নেতা কর্মিদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে।এবং গ্রেফতার করছে। নির্বাচন মানেই তো উৎসবের একটা আমেজ। কিন্তু সবসময় সংশয় শঙ্কার মধ্যে থাকতে হচ্ছে। গ্রেফতারের ভয় পেতে হচ্ছে।" মি: রিজভী আরও জানিয়েছেন, নাশকতার পুরোনো মামলাগুলো সচল করে বিএনপি নেতা কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে এবং অনেক এলাকায় নতুন মামলাও দেয়া হচ্ছে। তিনদিন আগে ঢাকার কাছে টঙ্গী থেকে সেখানকার বিএনপির যুব সংগঠনের একজন নেতা জসীম ভাটকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তার মেয়ে জেসিন ভাট অভিযোগ করেছেন, নাশকতার পুরোনো মামলায় তার পিতা জামিনে থাকলেও দলের নির্বাচনী বৈঠকের সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিএনপি এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনের সাথে কয়েকদফা বৈঠক করেছে। এসব বৈঠকে দলটি নির্বাচনে তাদের অন্যতম উদ্বেগের বিষয় হিসেবে গ্রেফতারের ইস্যুকে তুলে ধরেছে। তারা সপ্তাহ দুয়েকআগে তাদের পাঁচশ'র বেশি নেতা কর্মীকে গ্রেফতারের একটি তালিকাও কমিশনকে দিয়েছে। এরপরও পরিবেশ বদলাচ্ছে না বলে তারা অভিযোগ করছেন। বিএনপি নির্বাচন কমিশনের সাথে তাদের বৈঠকগুলোতে তাদের গ্রেফতার আতংককে অন্যতম ইস্যু হিসেবে তুলে ধরেছে তবে একজন নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম এই ইস্যুতে আইন শৃংখলা রক্ষকারী বাহিনীর প্রতি তাদের নির্দেশের কথা তুলে ধরেন। "আমরা কিন্তু ইতিমধ্যে নির্দেশ দিয়েছি যে, বিনা কারণে বা কোন হয়রানিমূলক গ্রেফতার যেন করা না হয়। এরপরও উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিনাকারণে গ্রেফতার হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে অবশ্যই কমিশন জবাবদিহিতার মধ্যে আনবে।" এদিকে, পুলিশে উর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে, তারা দাবি করেছেন, ফৌজদারি অপরাধের মামলার সুনির্দিষ্ট অভিযুক্ত ছাড়া কাউকেই গ্রেফতার করা হচ্ছে না। বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারেন: নির্বাচনী আইন কি স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিপক্ষে যাচ্ছে? ঐক্যফ্রন্ট জিতলে প্রধানমন্ত্রী হবেন কে? কানাডায় নারীরা কেন অন্যের বাচ্চা জন্ম দিচ্ছেন? বিদেশে গিয়ে কী করলে হাতকড়া পরতে হতে পারে? বাংলাদেশে বিরোধীদল বিএনপির নেতা কর্মীরা গ্রেফতার আতংকের কারণে ভোটের মাঠে এখনও সেভাবে সক্রিয় হতে পারছে না বলে দলটির নেতারা অভিযোগ করেছেন। +text: অভিনেত্রী ও চিত্রপরিচালক নন্দিতা দাস দুজনের আর একটা মিল, নারীদের অধিকার আন্দোলনের লড়াইতে তারা আগাগোড়াই সরব, পরিচিত মুখ। সাহসী ও বলিষ্ঠ মতামতের জন্য দুজনকেই মানুষ স্পষ্টভাষী বলে চেনে। কিন্তু এই মুহুর্তে তারা দুজনেই কিছুটা অস্বস্তিতে - কারণ ভারতে মি টু আন্দোলনের সুনামিতে ভেসে এসেছে তাদের দুজনেরই বাবার নাম। তারা যথাক্রমে শিল্পী যতীন দাস ও সাংবাদিক বিনোদ দুয়া। 'পদ্মভূষণ' খেতাবে ভূষিত যতীন দাস ভারতের জীবিত শিল্পীদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত বললেও সম্ভবত ভুল হবে না। তিনি একাধারে চিত্রশিল্পী ও ভাস্কর, বহু স্মরণীয় শিল্পকর্মের স্রষ্টা। আর বিনোদ দুয়া গত প্রায় চার দশক ধরে ভারতের হিন্দি সাংবাদিকতার জগতের একজন দিকপাল, বিখ্যাত টিভি অ্যাঙ্কর। এই মুহুর্তে তিনি 'জন গণ মন কি বাত' বলে একটি সাপ্তাহিক ভিডিও বার্তা পরিবেশন করে থাকেন, সেটিও তুমুল জনপ্রিয়। কমেডিয়ান মল্লিকা দুয়া গত ১৬ অক্টোবর নিশা বোরা নামে একজন মহিলা প্রথম টুইটারে যতীন দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন, চোদ্দ বছর আগে তিনি ওই শিল্পীর হাতে যৌন লাঞ্ছনার শিকার হয়েছিলেন। যতীন দাসকে 'মাই মলেস্টর' বলে অভিহিত করে নিশা বোরা বিশদে বর্ণনা দিয়েছেন, কীভাবে দিল্লিতে নিজের স্টুডিওতে ডেকে পাঠিয়ে শিল্পী তাকে যৌন হেনস্থা করেছিলেন। তার ওই বিবরণ প্রকাশিত হওয়ার পর গারুশা কাটোচ, মালবিকা কুন্ডু ও অনুশ্রী মজুমদারের মতো আরও অনেক মহিলা প্রকাশ্যে এগিয়ে এসে যতীন দাসের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন, জানিয়ে��েন শিল্পী কীভাবে তাদেরও বিভিন্ন সময়ে যৌন নিগ্রহ করেছিলেন। এদিকে পদ্মশ্রী খেতাবপ্রাপ্ত বিনোদ দুয়ার বিরুদ্ধে 'স্টকিং' ও যৌন লাঞ্ছনার অভিযোগ এনেছেন নিষ্ঠা জৈন নামে আর এক চিত্রনির্মাতা ও সাংবাদিক। ১৯৮৯ সালে চাকরির ইন্টারভিউতে ডেকে ও পরে নিজের গাড়িতে বসিয়ে কীভাবে বিনোদ দুয়া তাকে যৌন হেনস্থা করেছিলেন, প্রায় তিরিশ বছর বাদে সে ঘটনোরও পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা দিয়েছেন নিষ্ঠা। শিল্পী যতীন দাস এরই মধ্যে যতীন দাস ও বিনোদ দুয়া দুজনেই তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো জোরালোভাবে অস্বীকার করেছেন। কিন্তু এই সব অভিযোগকে কেন্দ্র করে তাদের মেয়েরা, যথাক্রমে নন্দিতা দাস ও মল্লিকা দুয়া, কী ধরনের অবস্থান নেন সে দিকে অনেকেরই সাগ্রহ নজর ছিল। বিশেষত নন্দিতা দাসের ওপর, কারণ বলিউডের যে ১১জন নারী চিত্রনির্মাতা একসঙ্গে মিলে অঙ্গীকার করেছেন 'মি টু'-তে অভিযুক্ত কারও সঙ্গে কোনও কাজ করবেন না নন্দিতা তাদেরও একজন। নন্দিতা দাস অবশ্য বেশিক্ষণ চুপ থাকেননি। নিশা বোরা টুইটারে তার অভিযোগ প্রকাশ করার পর দিনই নন্দিতা তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লেখেন, 'মি টু আন্দোলনের প্রতি আমি আমার সমর্থন চালিয়ে যাব'। তার ফেসবুক পোস্টটি ছিল এরকম : নন্দিতা দাসের সেই ফেসবুক পোস্ট "মি টু আন্দোলনের একজন বলিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে আমি আবারও বলতে চাই, যদিও আমার বাবার বিরুদ্ধে কিছু বিচলিত করার মতো অভিযোগ উঠেছে ও সেগুলো তিনি অস্বীকার করেছেন, আমি এই আন্দোলনের পক্ষে সরব থাকব।" "প্রথম থেকেই আমি বলে আসছি এটা এমন একটা সময় যখন আমাদের শোনাটা খুব প্রয়োজন, যাতে নারীরা (ও পুরুষরা) মুখ খুলতে ভরসা পায়। পাশাপাশি অভিযোগগুলো নিয়ে নিশ্চিত হওয়াটাও কিন্তু জরুরি, যাতে এই আন্দোলনে বেনোজল না-ঢুকে যায়!" "আমি অভিভূত যে চেনা-অচেনা বহু লোক বিষয়টা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, আমার সততার ওপর আস্থা রেখেছেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে সত্যিটা একদিন সামনে আসবেই - আর এই মুহুর্তে আমার এর চেয়ে বেশি কিছু বলার নেই।" কমেডিয়ান মল্লিকা দুয়াও নিজের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বলেছেন, তার বাবার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো উঠেছে 'তা সত্যি হলে' কিছুতেই মেনে নেওযা যায় না। নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে তিনি লেখেন : সাংবাদিক বিনোদ দুয়া "নিষ্ঠা জৈনের প্রতি : আপনি যা বর্ণনা করেছেন, আমার বাবা যদি সত্যিই সেই অপরাধে দোষী হন, তাহলে স��টা অবশ্যই অগ্রহণযোগ্য, যন্ত্রণাদায়ক ও হৃদয়বিদারক।" "মি টু আন্দোলনের প্রতি আমার সহমর্মিতা অটুট থাকবে, এই কন্ঠস্বরগুলোকেও আমি সমর্থন করে যাব। কিন্তু অভিযোগ করতে গিয়ে যেভাবে আপনি আমার নামকেও টেনে এনেছেন সেটা অত্যন্ত কুরুচিকর।" "বাকি সবার প্রতি: এই লড়াইটা কিন্তু আমার নয়। এটা আমার কোনও দায় নয়, লজ্জা নয় - বা আমার কোনও বোঝাও নয়।" "এটা পুরোপুরি আমার বাবারই লড়াই। আমি তাকে তার লড়াই লড়তে দেব, এবং অবশ্যই তার পাশে থাকব।" মল্লিকা দুয়া যে নিজের অভিযুক্ত বাবার পাশেই আছেন, সম্ভবত সেটা বোঝাতেই কিছুক্ষণ পর ইনস্টাগ্রামে আর একটি পোস্ট করেন তিনি - যাতে দেখা যাচ্ছে স্কুল বা কলেজজীবনে জেতা কোনও ট্রফি তার হাতে, আর গর্বিত বাবা বিনোদ দুয়া সস্নেহে তার কাঁধে হাত রেখে আছেন। মল্লিকা দুয়ার সেই ইনস্টাগ্রাম পোস্ট মল্লিকা ছবিটির নিচে ক্যাপশন দেন, "হিরোদের রাতারাতি গড়াও যায় না, আবার ভাঙাও যায় না। # পাপাজি।" এই সব অভিযোগ নিয়ে যখন তুলকালাম চলছে, তখন মল্লিকা দুয়া যেভাবে নিজের বাবাকে 'হিরো' বলে বর্ণনা করেছেন, তারও অনেকে তীব্র সমালোচনা করছেন। কলামনিস্ট স্নেহা বেনগানি যেমন লিখেছেন, "বাবার বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না-হওয়া পর্যন্ত মেয়ের তার পাশে দাঁড়ানোটা এক জিনিস।" "কিন্ত বাবা যখন গুরুতর যৌন অসদাচরণে অভিযুক্ত, তখন তাকে হিরো বলে ডাকাটা আর এক জিনিস। এটা শুধু মুশকিলের নয় - চরম ভন্ডামিরও পরিচয়!" ফলে ভারতে 'মি টু' ক্যাম্পেনারদের কারও কারও বাবার বিরুদ্ধেই যখন অভিযোগের তীর - তখন তাদের মেয়েরাও যে না-চাইলেও সেই বিতর্কের ঝড়ের ভেতর পড়ে যাচ্ছেন, সেটাও দেখা যাচ্ছে। নন্দিতা দাস ও মল্লিকা দুয়া। প্রথমজন ভারতের নামী অভিনেত্রী ও পরিচালক, আর দ্বিতীয়জন দেশের সেরা স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ানদের একজন। অভিনয়ও করেন সিনেমাতে। +text: অক্সিজেন পাবার জন্য রোগীদের হাহাকার বাড়ছে। আইসিইউতে শয্যা জোগাড় করতে মানুষ যখন হন্যে হয়ে খুঁজছেন, তখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে বহু আইসিইউ শয্যা খালি আছে। শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, কোভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলোতে মোট ১৪০৮৭টি শয্যা আছে। এর বিপরীতে ৪৮৪৪ জন রোগী ভর্তি আছে। অর্থাৎ হাসপাতালের প্রায় ৬৫ শতাংশ শয্যা খালি আছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছ��, কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য ৩৮৮টি আইসিইউ শয্যা আছে। এর বিপরীতে রোগী আছে ১৯১ জন। অর্থাৎ ১৯৭টি আইসিইউ শয্যা খালি আছে। যে পরিসংখ্যান দেখা যাচ্ছে তাতে কোভিড-১৯ রোগীদের হাসপাতালে চিকিৎসা পেতে কোন সমস্যা হবার কথা নয়। সরকারি পরিসংখ্যান যাই বলুক কেন, বাস্তব চিত্র তার চেয়ে আলাদা। ঢাকার একজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানালেন কয়েকদিন আগে তার বাবা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আইসিইউতে একটি শয্যা জোগাড় করার জন্য পুরো রাত ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ধর্না দিয়েছেন তিনি। ঐ ব্যক্তি বিবিসি বাংলাকে বলেন, "ডাক্তাররা বলেছিল, আপনাদের আইসিইউ দরকার হতে পারে, আপনারা খুঁজতে থাকুন। তখন আমরা পাগলের মতো খুঁজেছিলাম। কোন হসপিটাল থেকে রেসপন্স পাইনি।" নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে বিশ্ব মহামারি শেষ হতে কতদিন লাগবে? করোনাভাইরাস নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন একথা ঠিক যে বাংলাদেশের ৯০ শতাংশের বেশি কোভিড-১৯ রোগী বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন অথবা তাদের হাসপাতালে যাবার প্রয়োজন হচ্ছেনা। অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন হাসপাতালের চরম অব্যবস্থাপনা নিয়ে রোগী এবং তাদের পরিবারের মধ্যে এক ধরণের ভয়ও তৈরি হয়েছে। সেজন্য অবস্থা একেবারে খারাপ না হলে কেউ হাসপাতালে যেতে চায় না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একদিকে বলছে আইসিইউ শয্যা খালি আছে, অন্যদিকে বিভিন্ন রোগীর পরিবার বলছে হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা পাওয়া যায়না। এ অবস্থা কেন তৈরি হলো? জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং ওয়াটার এইডের আঞ্চলিক পরিচালক খায়রুল ইসলাম বলেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা ধারণা হয়েছে যে কোন হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য শয্যা খালি নেই। তিনি মনে করেন, কোন হাসপাতালে কয়টি আইসিইউ এবং সাধারণ শয্যা খালি আছে সেটি প্রতিদিন প্রকাশ করা উচিত। "এই পরিসংখ্যানটা যদি জানানো হতো, মানুষজনও তাহলে সে অনুযায়ী এলাকা বাছাই করে যেতে পারতো এবং চিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারতো," বলেন মি: ইসলাম। রোগীদের অনেকেই অভিযোগ করছেন, কোন কোন হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা খালি থাকলেও সেটি সাধারণ রোগীদের দেবার ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অনীহা দেখায়। মহামারির এ পরিস্থিতিতে আইসিইউতে দু-একটি শয্যা সবসময় বিশেষ প্রয়োজনে খালি রেখে দেয়া হয় বলে সাধারণ রোগীদের অভিযোগ। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এ ধরণের কোন অভিযোগ তাদের কাছে আসেনি। বাংলাদেশে কোভিড-১৯এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকের জন্য হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউ'র প্রয়োজন হলেও সেটি পাওয়া যাচ্ছে না বলে রোগীর স্বজনদের বেশ জোরালো অভিযোগ রয়েছে। +text: তরুণরা অন্যদের জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অপেক্ষাকৃত কম বয়সীদের বেশি হারে আক্রান্ত হওয়াকে এখন বিশ্বব্যাপী বিশেষ উদ্বেগের সাথে দেখা হচ্ছে। তরুণ প্রজন্ম 'সেকেন্ড ওয়েভ' অর্থাৎ সংক্রমণ কমে আসার পর আবার ঊর্ধ্বগতিতে সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য দায়ী হতে পারেন কিনা সেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশেও অপেক্ষাকৃত কম বয়সীরাই করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। সরকারি সংস্থা রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট আইইডিসিআর তথ্যমতে, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে এপর্যন্ত শনাক্ত ব্যক্তির ৫০ শতাংশেরই বয়স ২১ থেকে ৪০ বছর। জুনের ২৪ তারিখ তোলা এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে ঢাকার একটি শপিং মলে ঢোকার জন্য তরুণদের লম্বা লাইন। তরুণরাই যখন ঝুঁকির কারণ বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগ ৩০শে জুন জানিয়েছে এর আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ৬৪ জন মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃতদের মধ্যে ৪৮ জনেরই বয়স ৫১ থেকে ৮০ বছর। যাদের উপসর্গ গুরুতর হচ্ছে তাদের মধ্যেও বয়স্করাই বেশি রয়েছেন। বিশ্বব্যাপীই এই প্রবণতা রয়েছে। আইইডিসিআরের ভাইরলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলছেন, "তরুণরা উদ্বিগ্ন বোধ করছেন না। কারণ তারা দেখছেন যে আক্রান্ত হলেও তাদের উপসর্গগুলো খুব গুরুতর নয়। অনেক সময় তাদের মধ্যে কোন উপসর্গই দেখা যায় না। তারা দেখছে যে মূলত বয়স্করাই বেশি মারা যাচ্ছেন। তাই করোনাভাইরাসকে তারা হালকাভাবে নিচ্ছেন।" এর ফল হল তরুণরা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন কম। তারা যে অন্যদের জন্য ঝুঁকির কারণ সে বিষয়ে আলাদা করে কোন প্রচারণা না থাকায় সংক্রমণ রোধে নিজেদের দায়িত্বটুকু তারা বুঝতে পারছেন না। অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলছেন, "রাস্তায় নামলে দেখা যায় অনেক তরুণ গা ঘেঁষাঘেঁষি করে আড্ডা দিচ্ছেন। কারো মুখে হয়ত মাস্ক আছে, কারো নেই, কেউ আবার মাস্ক গলায় ঝুলিয়ে রেখেছেন। তারা বাইরে বের হন বেশি, তাদের মধ্যে রেকলেস হওয়ার প্রবণতাও বেশি।" কোভিড-১৯ আক্রান্ত বয়স্কদের অবস্থা বেশি গুরুতর হচ্ছে। "এই তরুণরাই বাড়ি গিয়ে নিজের পরিবার, প্রতিবেশী, আত্মীয়দের সংক্রমিত করছেন। পরিবারে আগে থেকেই কারো হার্ট, কিডনির সমস্যা বা ডায়াবেটিস আছে তাদেরকেও বড় ঝুঁকিতে ফেলছেন।" অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলছেন, তরুণরা নিজেরা আক্রান্ত হয়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরীক্ষা ব্যবস্থার উপর চাপ তৈরি করছেন। তাদের কারণেই হয়ত একজন বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর পরিস্থিতিতে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। এতে হাসপাতাল ব্যবস্থার উপরেও চাপ পড়ছে। বাংলাদেশে পরিবারের কাঠামো বাংলাদেশের পারিবারিক কাঠামোর জন্যেও তরুণরা অন্যদের ঝুঁকির কারণ, বলছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক জোবাইদা নাসরিন। তিনি বলছেন, "বাংলাদেশে এখনো পরিবারগুলোতে বাবা-মা, ভাই-বোন হয়ত অন্য কোন আত্মীয় সবাই মিলে একসাথে থাকেন। বাংলাদেশে কয়টি পরিবার সবার জন্য আলাদা রুমের ব্যবস্থা করতে পারে? হয়ত দুই ভাই বা দুই বোন একরুমে থাকে। স্বভাবতই তরুণদের কেউ বাইরে আক্রান্ত হলে সে বাড়িতে অন্যদের সংক্রমিত করবে।" করোনাভাইরাস: সুস্থ হয়ে উঠতে কতদিন লাগে? কাদের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে আর কাদের জন্য জরুরি নয় করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় যাদের স্বাস্থ্য সমস্যা আছে তাদের কী করতে হবে তিনি আরও বলছেন, "তারুণ্যের একটা চরিত্র রয়েছে। তারা বন্ধুদের সাথে সময় কাটাতে পছন্দ করে। হৈ হুল্লোড় তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। দীর্ঘ সময় অবরুদ্ধ থাকায় তারা হয়ত হাঁপিয়ে উঠে বাইরে বেশি বের হচ্ছেন। দিন যত বেশি হচ্ছে, বাংলাদেশ অনেক কিছু শিথিল করছে। তাই সামাজিক বিচ্ছিন্নতাও কিছুটা গুরুত্ব হারিয়েছে।" তরুণদের ওপর চাপ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে শনাক্ত ৫০ শতাংশের বয়স ২১ থেকে ৪০ বছর এই তথ্য আর একটি গুরুত্ববহন করে, বলছেন জোবাইদা নাসরিন। তিনি বলছেন, "এই বয়সীরাই মূলত পরিবারের অর্থের যোগান দেয়ার দায়িত্ব পালন করেন বেশি। তাকে চাকরীর জন্য, ব্যবসা বাণিজ্য বা পরিবারের অন্যান্য কাজে বাইরে যেতে হয় বেশি। আর করোনাভাইরাস সংক্রমণে বয়স্কদের অবস্থা বেশি গুরুতর হয় এমন তথ্য জানার পর আমরা কিন্তু আমাদের পরিবারের বয়স্কদের এক অর্থে ঘরে বন্দি করে ফেলেছি। তাদের কাজগুলোও তরুণরা করে দিচ্ছে।" অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যোগ দিতে অনেক তরুণ বাইরে বের হন। তরুণদের জন্য নেই আলাদা প্রচারণা ঢাকার মিরপুরের এক গাড়িচালকের সাথে কথা হচ্ছিল। তার বয়স ২৫ হবে। কয়েকদিন আগে তার হালকা জ্বর ও শরীর ব্যথা হওয়ার পর বিষয়টিকে একেবারেই গুরুত্ব দেননি। পরিবারের সাথে সাধারণ সময়ের মতোই ওঠবস করেছেন। করোনাভাইরাসের জন্য পরীক্ষা করিয়েছেন কিনা তা জানতে চাইলে তিনি বলছিলেন, "বেশি কিছুতো হয়নাই। ওই একটু জ্বর ও শরীর ব্যথা হইছিল। এখন ঠিক হইয়া গেছে।" আমার বাসার পাশে একটি মুদি দোকানের কর্মচারীকে কোনদিনই মুখে মাস্ক পড়তে দেখিনি। তাকে জিজ্ঞেস করলে প্রতিবারই বলেছেন, "আরে আমাদের কিছু হবে না।" গত কিছুদিন যাবত জ্বর হলেই চিকিৎসকেরা করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করাতে বলছেন। তিনি যদি আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে অন্যদের জন্য তারা যে ঝুঁকির কারণ হচ্ছেন আর সে কারণেই যে পরীক্ষা করিয়ে নেয়া ভাল, এই দুই তরুণ সেটির গুরুত্ব বুঝতে পারেননি বলেই মনে হল। তরুণ প্রজন্মের অনেকে সামাজিক বিচ্ছিন্নতাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। অন্যদিকে সরকারের স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে অপেক্ষাকৃত কম বয়সীদের এত বেশি সংখ্যায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে তারা খুব একটা উদ্বিগ্ন বলে মনে হয়নি। কম বয়সীদের বেশি আক্রান্ত হওয়ার দৈনিক তথ্য ঠিকই পাওয়া যাচ্ছে, তার কারণও তারা বলছেন। কিন্তু সংক্রমণ রোধে তরুণ প্রজন্মের যে বাড়তি দায়িত্ব সেটি তাদের বোঝাতে আলাদা করে প্রচারণার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক পরিচালক ডা. মো: হাবিবুর রহমান। তিনি বলছেন, "কোভিড ১৯ সম্পর্কে সচেতনতায় আমরা যে প্রচারণা চালাচ্ছি সেখানে তরুণ প্রজন্মকে বোঝানোর জন্য আলাদা কোন প্রচারণা নেই। আমাদের গোটা কর্মসূচি সবাইকে ঘিরে একসাথে। বাচ্চা থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবাইকে আমরা মোটিভেট করার চেষ্টা করছি। তবে হ্যাঁ আমি আপনার সাথে একমত। তাদের জন্য আলাদা প্রচারণা হওয়া উচিৎ।" যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় বলছে, দেশটিতে তরুণ প্রজন্মের আক্রান্ত হওয়ার হার বাড়ছে। সেখানে ফ্লোরিডা, সাউথ ক্যারোলাইনা, জর্জিয়া ও টেক্সাস সহ আরও কিছু অঙ্গরাজ্যে তরুণদের বেশি আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। +text: সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বইয়ের প���রচ্ছদ বিচারপতি সিনহার বই 'এ ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল, হিউম্যান রাইটস এন্ড ডেমোক্রেসি" মাত্রই প্রকাশিত হয়েছে এবং এটি এখন আমাজনে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। এই বইতে বিচারপতি সিনহা সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন কোন পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের সঙ্গে তার বিরোধ তৈরি হয়েছিল, এবং কিভাবে তাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়, এবং তারপর কেন তিনি প্রধান বিচারপতির পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন। তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ের হুমকি ও ভীতি প্রদর্শনের মুখে তিনি দেশে ছেড়েছেন। বিচারপতি সিনহা লিখেছেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়টি যেন সরকারের পক্ষ যায়, সেজন্যে তার ওপর 'সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে চাপ তৈরি করা হয়েছিল।' মি. সিনহার পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছিল ২০১৭ সালে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত একটি মামলার আপিলের রায়কে কেন্দ্র করে। এ রায় নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং সরকারের কাছ থেকে প্রচণ্ড চাপের মুখে বিচারপতি সিনহা দেশ ছেড়ে যান বলে অভিযোগ রয়েছে। এখানে বইটির মুখবন্ধের কিছু অংশের অনুবাদ দেয়া হলো। 'বলা হতে লাগলো আমি অসুস্থ' মি. সিনহা লেখেন, "প্রধানমন্ত্রী এবং তার দলের অন্যান্য সদস্য ও মন্ত্রীরা পার্লামেন্টের বিরুদ্ধে যাবার জন্য আমার কঠোর নিন্দা করেন। প্রধানমন্ত্রী সহ ক্যাবিনেট মন্ত্রীরা আমার বিরুদ্ধে অসদাচরণ এবং দুর্নীতির অভিযোগ এনে বদনাম করতে শুরু করেন।" "আমি যখন আমার সরকারি বাসভবনে আবদ্ধ, আইনজীবী এবং বিচারকদের আমার সাথে দেখা করতে দেয়া হচ্ছিল না, তখন সংবাদমাধ্যমকে বলা হয় - আমি অসুস্থ. আমি চিকিৎসার জন্য ছুটি চেয়েছি।" "একাধিক মন্ত্রী বলেন, আমি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবো।" "অক্টোবরের ১৪ তারিখ, যখন আমি দেশ ছাড়তে বাধ্য হই - তখন একটি প্রকাশ্য বিবৃতিতে আমি পরিস্থিতি স্পষ্ট করার চেষ্টায় একটি বিবৃতি দেই যে আমি অসুস্থ নই এবং আমি চিরকালের জন্য দেশ ছেড়ে যাচ্ছি না।" "আমি আশা করছিলাম যে আমার প্রত্যক্ষ অনুপস্থিতি এবং আদালতের নিয়মিত ছুটি - এ দুটো মিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সহায়ক হবে, এবং শুভবুদ্ধির উদয় হবে, সরকার ওই রায়ের যে মর্মবস্তু - অর্থাৎ বিচারবিভাগের স্বাধীনতা যে জাতি ও রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর - তা বুঝতে পারবে।" "শেষ পর্যন্ত দেশের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা - যার নাম ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স - তাদের ভীতি প্রদর্শন এবং আমার পরিবারের প্রতি হুমকির সম্মুখীন হয়ে আমি বিদেশ থেকে আমার পদত্যাগপত্র জমা দেই।" বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এ নিয়ে বিবিসি বাংলাকে একটি সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন। গত বছরের নানা নাটকীয় ঘটনাবলীর পর কোন গণমাধ্যমে এটিই ছিল তার প্রথম সাক্ষাৎকার। বিবিসি বাংলাকে দেয়া এস কে সিনহার সাক্ষাৎকারের একটি অংশ শুনুন এখানে> আপনাকে বলা হলো পদত্যাগ করবেন, আপনি করছেন না 'আপনাকে বলা হলো বিদেশে যাবেন, কিন্তু যাচ্ছেন না' তিনি সাক্ষাতকারে বলেন, "আমাকে যখন কমপ্লিটলি হাউজ এ্যারেস্ট করা হলো, ...তখন বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিদিন একজন করে ডাক্তার আমার কাছে পাঠানো হতো। আমি নি:শ্বাস নিতে পারছিলাম না।" "এর মধ্যে ডিজিএফআইয়ের চিফ এসে বললেন, হ্যাঁ আপনাকে বলা হলো আপনি বিদেশ যাবেন, আপনি যাচ্ছেন না।" "আমি বললাম: কেন যাবো আমি বিদেশে?" "আপনি চলে যান, আপনার টাকা পয়সার আমরা ব্যবস্থা করছি।" "আমি বললাম, এটা হয় না, আমি আপনাদের টাকা নেবো না। আর আপনারা বললেই আমি ইয়ে করবো না। আমি চাই সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রীর সাথে আমি আলাপ করি । ব্যাপারটা কি হয়েছে আমি জানতে চাই। (তিনি) বলেন যে প্রধানমন্ত্রী আপনার সাথে কথা বলবেন না।" সুরেন্দ্র কুমার সিনহা 'বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের দ্বন্দ্ব' মি. সিনহা লেখেন, তার এ বইতে তার ব্যক্তিগত ও বিচার বিভাগে কর্মজীবনের কথা, বাংলাদেশের বিচার বিভাগের প্রতি চ্যালেঞ্জসমূহ, বিচারবিভাগ ও রাজনীতিবিদদের মূল্যবোধের অবক্ষয়, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, পুলিশের বাড়াবাড়ি, জরুরি অবস্থার প্রভাব, এবং "ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ডিজিএফআইয়ের অর্থ আদায়ের" বিবরণ আছে। বিচারপতি সিনহার বই-এর একটি মুখবন্ধ রয়েছে - যাতে তিনি সংক্ষেপে "বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের দ্বন্দ্ব" বর্ণনা করেছেন এবং তার ভাষায় কী পরিস্থিতিতে তিনি প্রধান বিচারপতির পদ ত্যাগ করে বিদেশে গিয়েছিলেন তা লিখেছেন। বাংলাদেশের পার্লামেন্টে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে সংবিধান সংশোধন করে বিচারপতিদের ইমপিচ করার ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের পরিবর্তে পার্লামেন্টের সদস্যদের দেবার পর ২০১৬ সালের ৫ই মে হাইকোর্ট ডিভিশনের একটি বিশেষ বেঞ্চ ওই সংশোধনীকে অসাংবিধানিক বলে রায় দেয়। সরকার এর বিরুদ্ধে আপীল করে, এবং সাত সদস্যের একটি বেঞ্চে আপীলের শুনানী হয়। বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তার বইতে লেখেন, "জুলাইয়ের ৩ তারিখ প্রধান বিচারপতি হিসেবে তার সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্ট বেঞ্চ আপীল খারিজ করে হাইকোর্ট ডিভিশনের রায় বহাল রাখে। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসের ১ তারিখ সর্বসম্মত রায়ের পূর্ণ বিবরণ প্রকাশিত হয়।" সেখানে তিনি লেখেন, "ওই সিদ্ধান্তের পর সেপ্টেম্বরের ১৩ তারিখে পার্লামেন্ট একটি প্রস্তাব পাস করে - যাতে সেই রায়কে বাতিল করার জন্য আইনী পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়।" বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা একটি আত্মজীবনীমূলক বই প্রকাশ করেছেন যেখানে তিনি দাবি করছেন তাকে সরকারের চাপ এবং হুমকির মুখে দেশত্যাগ করতে হয়েছে। +text: মোহাম্মদ বিন সালমান (বাঁয়ে) এবং বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সেখানে তিনি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলেও খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে কোন পক্ষই এখনো এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেনি। ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, এই খবর সত্যি হলে এটি হবে ঐতিহাসিকভাবে বৈরি দেশদুটির মধ্যে প্রথম কোন বৈঠক যার খবর প্রকাশ্যে এলো। একই সঙ্গে প্রথম কোন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর সৌদি আরব সফরও বটে এটি। ওই বৈঠকে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ছিলেন বলেও জানা যাচ্ছে। ইসরায়েলি সরকারের সোর্সের উদ্বৃতি দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম হারেৎজ বলছে, এই সফরের ব্যাপারে ইসরায়েলের বিকল্প প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীও অন্ধকারে ছিলেন। দুটি উপসাগরীয় দেশের সাথে ইসরায়েলের শান্তি প্রতিষ্ঠার পর ফিলিস্তিনিরা হতাশ এবং ক্ষুব্ধ যদিও একটি টুইট বার্তায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা এই বৈঠক হয়েছে বলে আভাস দিয়েছেন। তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোন পক্ষই এ ব্যাপারে কিছু জানায়নি। ইসরায়েলি সংবাদ মাধ্যমে ওয়াইনেটের বরাত দিয়ে দি ওয়াশিংটন পোস্ট লিখেছে, সৌদি আরবের উপকূলীয় শহর নিওমে রবিবার বিকালের দিকে কয়েক ঘণ্টা অতিবাহিত করেছেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এই সময় তার সঙ্গে ইসরায়েলি গুপ্তচর বাহিনীর প্রধান ইয়োসি কোহেন ছিলেন। সেখানে তিনি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান আর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও-র সঙ্গ�� বৈঠক করেন। হারেৎজ-এর খবর বলছে, বিমান চলাচলের তালিকায় দেখা যাচ্ছে, ইসরায়েল থেকে একটি বিমান সরাসরি সৌদি মেগা-সিটি নিওমে গিয়েছে। পাঁচ ঘণ্টা পরে সেটা আবার ফেরত এসেছে। অনেকদিন ধরেই ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন চেষ্টা করছে যাতে ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের চেষ্টায় গত অগাস্ট মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত আর বাহরাইন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নিয়েছে। তারা বাণিজ্য চালু করা, নিরাপত্তা ও পর্যটনের ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য একটি সমঝোতা করেছে। ওই সমঝোতাকে প্রতারণা বলে বর্ণনা করেছে ফিলিস্তিনি নেতারা। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের সাফল্যের হার ৭০% চেনা যে একুশটি গাছ-পাতা-ফুল-ফলের রয়েছে রোগ সারানোর ক্ষমতা আয়কর রিটার্ন জমা না দিলে কী বিপদ হবে, সমাধান কী? ব্যাংকে সাইবার হামলার আশংকা: কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রবিবার গোপনে সৌদি আরব সফর করেছেন বলে ইসরায়েলের গণমাধ্যম খবর প্রকাশ করেছে। +text: বাংলাদেশে পুলিশে তিনি ছিলেন বর্তমান সময়ের সবচাইতে উচ্চ পর্যায়ের নারী কর্মকর্তা। অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন তিনি। পুলিশের গণমাধ্যম শাখার দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক সোহেল রানা বিবিসিকে বাংলাকে জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যা ছটার দিকে কিনসাশায় তাকে বহনকারী একটি গাড়ির সঙ্গে একটি লরির সংঘর্ষে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তিনি কঙ্গোতে শান্তিরক্ষী মিশনে কর্মরত বাংলাদেশি পুলিশের কার্যক্রম পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন। সেখানে শান্তিরক্ষী মিশনের মেডেল প্যারেড পরিদর্শনে যোগ দিতে গিয়েছিলেন ৫৭ বছর বয়সী এই কর্মকর্তা। বাংলাদেশে পুলিশে তিনি ছিলেন বর্তমান সময়ের সবচাইতে উচ্চ পর্যায়ের নারী কর্মকর্তা। বাংলাদেশে প্রথম পুলিশ সুপার ফাতেমা বেগমের পরই রৌশন আরা বেগম ছিলেন নারীদের মধ্যে যোগ দেয়া দ্বিতীয় পুলিশ সুপার। পুলিশ বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তিনি বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৮৮ সালের পুলিশ ক্যাডারে যোগদান করেন। ১৯৯৮ সালের তিনি নারী পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে মুন্সীগঞ্জে দায়িত্ব পালন করেন। সন্ত্রাস বিরোধী সাহসী কার্যক্রমের জন্য তিনি বেশ কয়েকবার নিজের বাহিনীতে পুরস্কৃত হয়েছেন। বাংলাদেশ নারী পুলিশ নেটওয়ার্কের সাবেক প্রধান ছিলেন তিনি। তিনি কসাভোতে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষী মিশনে অপরাধ বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করেছেন। সুদানেও কাজ করেছেন রৌশন আর বেগম। বাংলাদেশ পুলিশের শীর্ষ নারী কর্মকর্তা রৌশন আরা বেগম আফ্রিকার দেশ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোতে এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। +text: সোফি পার্কিনসন যখন আত্মহত্যা করে তখন তার বয়স মাত্র ১৩। সে মানসিক অবসাদে ভুগছিল এবং আত্মহত্যার চিন্তা করছিল। তার মা রুথ মস-এর বিশ্বাস সোফি অনলাইনে যেসব ভিডিও দেখেছে সেগুলো থেকে সে আত্মহত্যায় প্ররোচনা পেয়েছ। অনেক তরুণের মতোই সোফিকেও ১২ বছর বয়সে মোবাইল ফোন কিনে দেয়া হয়েছিল। কিছুদিন পরেই তার মা টের পান যে সে ঐ ফোন ব্যবহার করে অনলাইনে এমন সব কন্টেন্ট দেখছে যা তার জন্য মোটেও উপযুক্ত নয়। "আমার পরিবারের জন্য সবচেয়ে কষ্টের ব্যাপার হলো যখন মৃত্যুর পর আমরা জানতে পারলাম যে সে এমন কিছু ছবি আর গাইড দেখেছে যেখানে কীভাবে আত্মহত্যা করতে হয় তার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে," বলছেন তিনি। মায়ের সাথে সোফি পার্কিনসনের ছবি। ছয় বছর আগে সে আত্মহত্যা করে। তখন তার বয়স ১৩। ব্রিটেনের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ অফকম-এর হিসেব অনুযায়ী, ১২-১৫ বছর বয়সীদের শতকরা ৯০ জনের হাতে মোবাইল ফোন রয়েছে। এদের মধ্যে প্রতি চার জনের তিনজনের এখন সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টও রয়েছে। আইন অনুযায়ী জনপ্রিয় অ্যাপগুলোতে ১৩ বছর বয়সের নীচে কাউকে অ্যাকাউন্ট খুলতে দেয়ার কথা না। কিন্তু তা সত্ত্বেও শিশুরা এসব অ্যাকাউন্ট তৈরি করছে এবং তাদের ঠেকাতে সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো কিছুই করছে না। ব্রিটেনের শিশু রক্ষা চ্যারিটি ন্যাশনাল সোসাইটি ফর দা প্রিভেনশন অফ ক্রুয়েল্টি টু চিল্ড্রেন্স (এনএসপিসিসি) বিশ্বাস করে, শিশুরা এসব কন্টেন্ট দেখে যে ঝুঁকির মুখে পড়ছে তা বিবেচনা করার জন্য আইন তৈরি করে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলিকে বাধ্য করা উচিত। "এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলি তাদের ব্যবসার মূল বিষয় হিসেবে শিশুদের নিরাপত্তার দিকটা নিয়ে মোটেও চিন্তা করছে না," বলছেন এনএসপিসিসি শিশু-রক্ষা নীতি বিভাগের প্রধান অ্যান্ডি বারোজ। সেফটুওয়াচ সফটওয়্যার ক্ষতিকর বিষয়বস্তু ব্লক করে। "এই সাইটগুলো এমনভাবে তৈরি হয়েছে যা দুর্বল টিনএজার, যারা নিজের ক্ষতি করার কথা ভাবছে, তাদের কাছে এই ধরনের কন্টেন্ট বেশি বেশি পাঠিয়ে তাদের আরও বেশি ঝুঁকির মুখে ফেলে দিচ্ছে।" নজর রাখুন, মুছে ফেলুন সম্প্রতি আত্মহত্যা করছেন এমন এক তরুণের ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজটি পরে অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়ে। জনপ্রিয় ভিডিও প্ল্যাটফর্ম টিকটক-এ এই ক্লিপটি বেশ কিছুদিন ধরে ছিল। টিকটক কর্তৃপক্ষ স্বীকার করছে, সোশাল মিডিয়া কোম্পানিগুলো যদি একসাথে কাজ করে তাহলে তাদের ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা আরও ভালভাবে রক্ষা করা সম্ভব হবে। সম্পর্কিত খবর: সোশ্যাল মিডিয়ায় লক্ষ নারীর ভুয়া পর্ন ভিডিও পর্নোগ্রাফি আসক্তি যেভাবে সব ধারণা বদলে দেয় অনলাইনে ধর্ষণের হুমকি দেয়ার কী শাস্তি আছে বাংলাদেশের আইনে? কিন্তু সোফির মা রুথ মস এখানে এনএসপিসসি'র সাথে একমত। তিনি মনে করেন এসব বিষয়ে নজরদারির দায়িত্ব সোশাল মিডিয়া কোম্পানিগুলির হাতে রাখা উচিত না। তিনি জানান, তার মেয়ে ছয় বছর আগে অনলাইনে যেসব কন্টেন্ট দেখেছিল তার অনেক কিছু এখনও দেখা যায়। ফেসবুক কিংবা ইনস্টাগ্রামে নির্দিষ্ট কিছু শব্দ টাইপ করলে সেই সব ছবি এখনও দেখতে পাওয়া যায়। চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে ফেসবুক ঘোষণা করেছে, আত্মহত্যা ও ক্ষতিকর কন্টেন্ট খুঁজে বের করতে এবং দূর করতে তারা ইনস্টাগ্রামে তাদের অটোমেটেড টুল-এর পরিধি আরও বাড়িয়ে দেবে। কিন্তু ফেসবুক বলছে, ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার ওপর ইউরোপের আইন এতই কঠোর যে এক্ষেত্রে তাদের খুব বেশি কিছু করার থাকে না। অন্যান্য ছোট স্টার্ট-আপগুলো এখন এই সমস্যার সমাধানে প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করেছে। 'সেফটুওয়াচ' নামে একটি কোম্পানি এক সফটওয়্যার তৈরি করছে যা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি ব্যবহার করে সহিংসতা কিংবা নগ্নতার ছবি তাৎক্ষণিকভাবে ব্লক করতে পারবে। এই সফটওয়্যারটি অডিও মনিটর করতে পারে এবং যে কোন ভিস্যুয়াল কন্টেন্টের প্রাসঙ্গিকতা বিশ্লেষণ করতে পারে। কোম্পানিটি বলছে, এর ফলে অভিভাবক যেমন তাদের ছেলে-মেয়েদের সুরক্ষা দিতে পারেন, তেমনি তরুণদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তাও খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা রিচার্ড পার্সি বলছেন, "তরুণরা কী করছে আমরা সেটা অন্য কাউকে দেখতে দেই না। কারণ সাইবার নিরাপত্তার জন্য যা সবচেয়ে ���েশি প্রয়োজন তা হলো শিশুর আস্থা অর্জন করা।" 'খোলামেলা আলোচনা' রুথ মস বলছেন, এই সমস্যার জন্য প্রায়ই অভিভাবককে দোষ দেয়া হয়। শিশুরা যত বড় হতে থাকে, যতই স্বনির্ভর হতে থাকে প্রযুক্তি দিয়ে তাদের সাহায্য করার সুযোগ ততই সীমিত হয়ে পড়ে। "তাদের টিনএজ সন্তানের মোবাইল ফোনে কী ঘটছে বেশিরভাগই মা-বাবাই তা জানতে পারেন না কিংবা নজর রাখতে পারেন না," বলছেন তিনি। এবং বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞই মনে করেন, বেশিরভাগ শিশুই কোন না কোন সময়ে অনলাইনে এ ধরনের অনুপযুক্ত কন্টেন্টের মুখোমুখি হবে। তারা পরামর্শ দিচ্ছেন, শিশুদের মধ্যে 'ডিজিটাল প্রতিরোধ' ক্ষমতা বাড়াতে হবে। মনস্তত্ত্ববিদ ড. লিন্ডা পাপাডোপুলাস বলছেন, "নিরাপদ জীবন যাপনের জন্য অন্যান্য বিষয়ে যেভাবে শিশুদের শিক্ষা দেয়া হয়, তেমনি অনলাইনে নিরাপদ থাকার দক্ষতাও শিশুদের মধ্যে গড়ে তুলতে হবে।" "অনলাইনে কী ধরনের বিষয়বস্তু রয়েছে সে সম্পর্কে ছেলে-মেয়েদের সাথে খোলামেলা আলোচনা করতে হবে, এবং কীভাবে তারা এসব বিষয় থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে সেই শিক্ষাও দিতে হবে।" তিনি জানান, অনলাইনে পর্নোগ্রাফি দেখার সুযোগ হয়েছে যেসব শিশুর তাদের গড়পড়তা বয়স ১১ বছর। তার পরামর্শ হচ্ছে, যদি আপনার বাচ্চা এরকম কিছু করে, তাহলে তার হাত থেকে মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে না নিয়ে তার সাথে বসে বিষয়টি তাকে বুঝিয়ে বলুন। "যে কোন হঠকারী সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ঠাণ্ডা মাথায় বিষয়টি নিয়ে নিজে চিন্তাভাবনা করুন," বলছেন তিনি। সোশাল মিডিয়া সাইটগুলোতে তার পাঠকদের জন্য নানা ধরনের রেকমেনডেশন পাঠানোর জন্য যেসব প্রোগ্রাম দেয়া থাকে তা শিশুদের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়। মানসিক অবসাদ কিংবা আত্মহত্যার জন্য তথ্য খুঁজছে যে টিনএজার তার কাছে এসব রেকমেনডেশন ইঞ্জিনগুলো আরও বেশি করে তথ্য পাঠায়। +text: ২০১৫ সালেই পাখিদের এই অত্যাচারের অভিযোগ করেছিলেন আফিম চাষীরা। ভারতের মধ্য প্রদেশের কৃষকরা বলছেন, অনাবৃষ্টির মৌসুমের পর টিয়া পাখিদের এমন দৌরাত্মে তাদের ফলনের ওপর বিরুপ প্রভাব পড়ছে। পাখিদেরকে লাউডস্পিকার বাজিয়ে ভয় দেখিয়ে নিবৃত্ত করা চেষ্টা বিফলে গেছে বলে জানিয়েছেন ঐ এলাকার কৃষকরা। তারা বলছেন, কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো সাহায্যই করেনি। টিয়াপাখির জন্য এ মৌসুমে কৃষকদের বিপুল পরিমাণ ক্ষতিও হতে পারে বলে সতর্ক করেছে তারা। এশিয়ান নেটওয়ার��ক নিউজ একটি ভিডিও টুইট করেছে, যেখানে দেখা যায় যে কয়েকটি পাখি একটি পপি ফুল মুখে নিয়ে উড়ে যাচ্ছে। আরো পড়ুন: বিশ্বে সবচেয়ে কম বয়সে কোটিপতি হলেন যে নারী সুস্থ হলেন এইডস রোগী: এই চিকিৎসা কী সবার জন্য? যে দেশের প্রেসিডেন্টকে বলা হয় ‘জীবন্ত লাশ’ এই কৃষকরা ওষুধ তৈরিকারী একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে তাদের ফসল সরবরাহ করে এবং তাদের আফিম চাষের লাইসেন্সও রয়েছে। নন্দকিশোর নামে একজন কৃষক এনডিটিভিকে জানান, তীব্র শব্দ করে বা মশাল জ্বালিয়েও পাখিদের নিবৃত্ত করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, একটি পপি ফুল থেকে ২০-২৫ গ্রাম আফিম হয়। কিন্তু বড় এক দল টিয়া পাখি দিনে ৩০-৪০ বার এইসব গাছ থেকে ফুল খেয়ে যায় এবং কোনো কোনো পাখি পপি ফুলের কলিও নিয়ে যায়। তিনি বলেন, "কেউ আমাদের অভিযোগ শুনছে না। আমাদের এই ক্ষতি পুষিয়ে দেবে কে?" মান্দসাওরের হর্টিকালচার কলেজের আর এস চুন্দাওয়াত ডেইলিমেইলকে জানান, এই আফিম পাখিগুলোকে তাৎক্ষণিক শক্তি দেয় - ঠিক যেমনটি মানুষের ক্ষেত্রে ঘটে চা বা কফি খাওয়ার পর। মি. চুন্দাওয়াত বলেন, একবার পাখিরা এই অনুভূতির সাথে পরিচিত হওয়ার পর খুব দ্রুত আসক্ত হয়ে পড়ে। বিশ্বের অন্যতম একটি গোপন এলাকা খবর ভারতের আফিম চাষীরা অভিযোগ করেছেন যে 'মাদকাসক্ত' টিয়া পাখি তাদের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করছে। +text: কোভিড-১৯ এর উৎস খুঁজে বের করতে ১০ জন আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীর একটি দল আগামী মাসে চীনের উহান শহর সফর করবেন এই বিষয়ে স্বাধীন তদন্ত পরিচালনা করার ব্যাপারে বেইজিং কখনোই খুব একটা আগ্রহ প্রকাশ করেনি। উহানে তদন্ত পরিচালনা করার অনুমতি পেতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারও দীর্ঘদিন যাবত আলোচনা করতে হয়েছে চীনের কর্তৃপক্ষের সাথে। বিভিন্ন ধরণের প্রাণী বিক্রি করা হয়, উহান শহরের এমন একটি বাজার থেকে এই ভাইরাসটি সংক্রমিত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তবে এর আসল উৎস কী, তা নির্ণয় করার প্রশ্নে শুরু থেকেই জটিলতা ছিল। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন শুরু থেকেই চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে যে তারা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি শুরুতে গোপন করেছে। এই তদন্তের উদ্দেশ্য কী? তদন্তকারী দলের একজন জীববিজ্ঞানী সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানান যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কারো উপর দোষ চাপানোর উদ্দেশ্যে এই তদন্ত পরিচালনা করছে না, বরং ভবিষ্যৎ সংক্রমণ থেকে সুরক���ষা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে কাজ করছে। জার্মানির রবার্ট কোক ইনস্টিটিউটের জীববিজ্ঞানী ফ্যাবিয়ান লিনডার্টজ বলেন, "কোন দেশ দোষী, তা খুঁজে বের করার জন্য এই তদন্ত নয়।" "আসলে কী হয়েছে, তা খুঁজে বের করা এবং সেই তদন্ত থেকে পাওয়া তথ্য নিয়ে আমরা ভবিষ্যৎ ঝুঁকি এড়াতে পারবো কিনা, সেই চেষ্টাই করবো আমরা।" আরো পড়তে পারেন: নতুন রূপ নিয়েছে করোনাভাইরাস: টিকায় কি আর কাজ হবে? হাসপাতালগুলো ফিরিয়ে দিল, মানুষ দুটি শেষ পর্যন্ত মরেই গেল টিকা আবিষ্কারক কোম্পানিগুলো কি শত শত কোটি ডলার মুনাফা করতে যাচ্ছে? বন্য প্রাণী বিক্রি করা হয়, উহান শহরের এমন একটি বাজার থেকে এই ভাইরসটি সংক্রমিত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তিনি জানান, চার থেকে পাঁচ সপ্তাহের এই সফরে ভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ার শুরুটা কীভাবে হয়েছিল এবং এটি উহান শহরেই উদ্ভূত হয়েছিল কিনা, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন তারা। ভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকে ধারণা করা হচ্ছিল হুবেই প্রদেশের উহান শহরের একটি জীবিত প্রাণী বেচাকেনার বাজারে ভাইরাসটি প্রথমবার শনাক্ত হয় এবং সেখান থেকেই মানুষের দেহে আসে ভাইরাসটি। তবে কিছু গবেষণা থেকে ধারণা পাওয়া যায় যে মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে, এমন করোনাভাইরাস বহুকাল ধরেই বাদুড়ের দেহে উপস্থিত ছিল। ভাইরাসের খবর প্রচারে চীনের পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া কী ছিল? জানুয়ারিতে চীনের নেয়া পদক্ষেপের প্রশংসা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হেলথ ইমার্জেন্সি প্রোগ্রামের প্রধান মাইক রায়ান মন্তব্য করেন যে 'কঠিন চ্যালেঞ্জ থাকলেও চীনের প্রতিক্রিয়া ছিল ব্যাপক।' বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছিল ভাইরাস সংক্রমণের হার কমিয়ে আনতে এবং ভাইরাসের জেনেটিক কোড সম্পর্কিত তথ্য জানাতে বেইজিং দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র সহ বেশ কয়েকটি দেশ চীনের পদক্ষেপের সমালোচনা করেছিল। চীন ভাইরাস বিষয়ক তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে কতটা স্বচ্ছ ছিল, সেবিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিল তারা। চীনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান গওডেন গালেয়া বিবিসিকে বলেন যে শুরুর দিকে ভাইরাস মোকাবেলায় 'ঘাটতি' থাকলেও ভবিষ্যতে কীভাবে সেগুলো দূর করা যায় বিশেষজ্ঞরা তা নিয়ে কাজ করছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অতিরিক্ত মাত্রায় 'চীন কেন্দ্রিক' আচরণ করছে বলে এক পর্যায়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পও সংস্থাটির সমালোচনা করেছিলেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে কোভিড-১৯ এর উৎস খুঁজে বের করতে ১০ জন বিজ্ঞানীর একটি আন্তর্জাতিক দল আগামী মাসে চীনের উহান শহর সফর করবেন। +text: মিয়ানমারের মন্ত্রী কক্সবাজারের উখিয়ায় কুতুপালং ক্যাম্পে যাবার সময় রোহিঙ্গারা বিক্ষোভ করে তাতে বাধা দেয় পুলিশ। মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী উইন মিয়াট আয়ে উখিয়ায় কুতুপালং ক্যাম্পে যাবার সময় রাস্তায় বিক্ষোভ করার চেষ্টা করে রোহিঙ্গারা। তবে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এসময় তারা বলতে থাকেন, ''আমাদের নির্যাতন করে, হত্যা করে, ধর্ষণ করে পাঠিয়ে দিয়েছে।'' ছবির কপিরাইট End of Facebook post, 1 শরণার্থী শিবিরে কয়েকজন রোহিঙ্গা শরণার্থীর সাথেও কথা বলেন মিয়ানমারের মন্ত্রী। সেখানেও রোহিঙ্গাদের 'বাঙালি' হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবার কথা বলেন তিনি। এতে শরণার্থীদেরও বিক্ষুব্ধ হতে দেখা যায়। বাঙালি নয় রোহিঙ্গা পরিচয়ে মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায় শরণার্থীরা। মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী উইন মিয়াট আয়ে মিয়ানমারের মন্ত্রীকে স্বাগত জানানোর জন্য সরকারের কোনো মন্ত্রী বা এমপিকে দেখা যায়নি। তবে মিয়ানমারকে সহযোগিতা করার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ দিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশে মিয়ানমার থেকে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছে (ফাইল ফটো) আরো পড়ুন:সরকারি চাকরিতে কোটা থাকবে না: ছাত্রলীগ সভাপতি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: নানা রকম বার্তা ছড়াচ্ছে আশ্রয় শিবিরগুলোতে প্রথমবারের মত বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করছেন মিয়ানমার সরকারের একজন মন্ত্রী। +text: মোচি : মুখরোচক কিন্তু খেয়াল না করলে মৃত্যুর আশঙ্কা যে পিঠায় মুখরোচক এই চালের পিঠা দেখে মনে হবে না এটা মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু প্রতিবছর এই খেতে-কঠিন পিঠা বহু মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিবছরই নতুন বছরের আগে সরকারকে পিঠা খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক বার্তা জারি করতে হয়। কী আছে এই মোচি পিঠায়? মোচি নামে এই ছোট গোল আকৃতির পিঠাগুলো বানানো হয় নরম কিন্তু আঠালো একরকম চাল দিয়ে। এই চাল প্রথমে ভাপে সিদ্ধ করা হয়, তারপর তা গুঁড়ো করে মেখে মণ্ড বানানো হয়। টোকিওতে মোচি বানানোর জন্য চাল গুঁড়ানো হচ্ছে এরপর আঠালো ওই ভাতের মণ্ড থেকে গোলাকৃতি পিঠাগুলো গড়া হয় এবং সেগুলো হয় উনানে বেক করা হয় বা সিদ্ধ করা হয়। পরিবারগুলো প্রথাগতভাবে সব্জি দিয়ে তৈরি পাতলা ঝোলের মধ্যে ফেলে এই মোচিগুলো সিদ্ধ করে। কিন্তু মোচি প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে কেন? মোচি পিঠাগুলো আঠালো এবং চিবানো কঠিন। মোচি যেহেতু মুখে পুরে চিবানোর মত ছোট সাইজের নয়, তাই এই পিঠা গেলার আগে ভাল করে তা চিবানোর প্রয়োজন হয়। এই পিঠা চিবাতে হয় অনেকক্ষণ ধরে। কিন্তু যারা ভাল করে চিবাতে পারে না, যেমন শিশু বা বয়স্ক মানুষ - তাদের জন্য এই পিঠা খাওয়া খুবই কঠিন। এই পিঠা চিবানো যাদের জন্য কষ্টকর, তাদের পিঠা ছোট ছোট করে কেটে খাবার পরামর্শ দিচ্ছেন জরুরি স্বাস্থ্যসেবার দায়িত্বে আছেন যারা তারা। যারা চিবাতে পারে না বা না চিবিয়ে এই পিঠা গিলে খাওয়ার চেষ্টা করে, এই আঠালো মোচি তাদের গলায় আটকে যায় এবং এর ফলে তাদের দমবন্ধ হয়ে যায়। জাপানী সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী নববর্ষের এই পিঠা গলায় লেগে দমবন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে যাদের জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে নিয়ে ছুটতে হয়, তাদের বেশিরভাগেরই বয়স ৬৫ বা তার বেশি। নিরাপদে মোচি খাবার উপায় কী? চিবানো- ভাল করে চিবিয়ে পিঠা খাওয়া। আর কারোর জন্য যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে পিঠা ছোট ছোট টুকরো করে কেটে খাওয়া নিরাপদ। প্রতিবছর ইংরেজি নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে উৎসব পালনের আগে কর্তৃপক্ষ জনস্বাস্থ্য হুঁশিয়ারি জারি করে -বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্কদের জন্য যাতে তারা মোচি পিঠা কেটে ছোট ছোট টুকরো করে সেগুলো খায়। তবে সতর্কবার্তা সত্ত্বেও প্রতি বছর এই রান্না করা পিঠা খেয়ে মানুষ মারা যাবার ঘটনা ঘটে। নিহতের সংখ্যা বিশাল না হলেও সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিবছর যত মানুষকে হাসপাতালে নিতে হয় তার সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। জাপানে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর অংশ হিসাবে যে চালের পিঠা খাওয়ার প্রথা অনেকদিনের, সেই পিঠা খেয়ে এবছরও মারা গেছে দুজন। আহত হয়ে সঙ্কটজনক অবস্থায় রয়েছেন আরও বেশ অনেকজন। +text: আপনার বয়সী একজন মানুষ কোন দেশে কতদিন বাঁচতে পারেন, কিংবা বাকি জীবনের কতটা সুস্থ থাকতে পারেন - তা দেখতে হলে আপনার তথ্যগুলো পূরণ করুন। দুঃখিত, আবার চেষ্টা করুন! দয়া করে আপনার ইন্টারনেট সংযোগটি পরীক্ষা করুন এবং 'ফলাফল দেখুন' ট্যাবটিতে পুনরায় চেষ্টা করুন সম্ভাব্য আয়ু আপনার জীবনের আর কতটা সময় সুস্থভাবে কাটবে? সম্ভাব্য আয়ু: আপনি বনা�� বিশ্ব জন্মের সময় দেশভেদে গড় আয়ু (বছর) জন্মের সয়ম বিশ্বব্যাপী গড় সম্ভাব্য আয়ু হলো 72 বছর - পুরুষদের 70, মহিলাদের 75; কিন্তু বয়সের সাথে সাথে এটি পরিবর্তিত হয়। যেমন 69 বছর বয়সী কোন মানুষ গড়ে আরো 17 বছর বেশি বাঁচার আশা করতে পারেন। আপনি যদি সম্ভাব্য গড় আয়ুর ক্যালকুলেটরটি দেখতে না পারেন, তাহলে এখানে ক্লিক করুন। আরো পড়ুন: দেখুন: আপনি কতদিন তারুণ্য ধরে রাখতে পারবেন ১০১ বছর বেঁচে থাকার ৭টি উপায় অত্যধিক যৌন আসক্তি কি আসলেই 'নেশা'? দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ায় সম্ভাব্য আয়ু জানতে ক্যালকুলেটরটি ব্যবহার করুন। কীভাবে এই ক্যালকুলেটর কাজ করে? গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজেস স্টাডি'র সর্বশেষ উপাত্ত থেকে এই হিসাবটি করা হয়েছে। বয়স, লিঙ্গ এবং দেশ অনুযায়ী একজন ব্যক্তির কত বছর বাঁচার সম্ভাবনা থাকে সেটি হলো সম্ভাব্য আয়ু। সম্ভাব্য গড় আয়ু হিসেব করতে গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজেস স্টাডি বিভিন্ন বয়সে একটি দেশের মৃত্যুহার ব্যবহার করেছে। সম্ভাব্য বাকি জীবনে একজন ব্যক্তি কত বছর সুস্থতা আশা করতে পারেন তার উপর ভিত্তি করে 'আপনি কত বছর সুস্থভাবে বাঁচার আশা করতে পারেন' তা নির্ণয় করা হয়েছে। ফলাফলে মৃত্যুহার এবং অক্ষমতাকে ধ্রুবক হিসেবে ধরা হয়েছে। ক্যালকুলেটরটি তৈরি করেছেন: টম কালভার, নাসোস স্টেলিয়ানাও, বেকি ডেল, নিক ট্রিগল, র‍্যানসাম পিনি, প্রিনা সাহা, জো রীড এবং এলিনোর কেইন। ব্যস্ত জীবনের ফাঁকে কিভাবে ব্যায়াম করবেন ২০১৬ সালে যারা জন্মগ্রহণ করেছেন তারা পঁচিশ বছর আগে জন্মগ্রহণকারীদের থেকে সাত বছর বেশি বাঁচবেন। +text: কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের পক্ষে ও বিপক্ষে প্রতিবাদ করছে মানুষ তবে ক্ষমতাসীন দল এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও এর ফলে পুরো ভারতেই তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেন কাশ্মীর নিয়ে বিতর্ক? কাশ্মীর হিমালয় অঞ্চলে অবস্থিত একটি এলাকা যেটিকে ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই নিজেদের বলে দাবি করে। একসময় জম্মু ও কাশ্মীর হিসেবে পরিচিত রাজ্যটি ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে উপমহাদেশের স্বাধীনতা লাভের সময় ভারতের সাথে যুক্ত হয়। ভারত ও পাকিস্তান এই অঞ্চলের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে কয়েকবার যুদ্ধে জড়ালেও শেষপর্যন্ত দুই দেশই সেখানকার ভিন্ন ভিন্ন অংশের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়। তিন দশক ধরে ভারত শাসিত অংশে ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোর বিক্ষোভ ও বিদ্রোহের কারণে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। বর্তমান অবস্থা কী? কাশ্মীরে যে কিছু একটা হতে চলেছে, অগাস্টের প্রথম কয়েকদিনে সেরকম একটা আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল। ঐ অঞ্চলে ১০ হাজার অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়, হিন্দু ধর্মের অন্যতম প্রধান একটি তীর্থযাত্রার অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়, স্কুল কলেজ বন্ধ করে দেয়া হয়, পর্যটকদের ফিরে যেতে নির্দেশ দেয়া হয়, টেলিফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয় এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের গৃহবন্দী করা হয়। আরো পড়তে পারেন: কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নিল ভারত সরকার কাশ্মীরের জন্য বিশেষ আইন কেন বিতর্কিত? আদালতে যাবে বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত? কাশ্মীরের সাথে গত তিন দশক ভারতের সম্পর্ক অস্থিতিশীল অনুমান করা হচ্ছিল, ভারতের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৫এ - যা ঐ রাজ্যের মানুষকে বিশেষ কিছু সুবিধা দেয় - তা বিলোপ করা হবে। এরপর ভারত সরকারের ঘোষণা সবাইকে চমকে দেয়, যখন তারা অনুচ্ছেদ ৩৭০ প্রায় সম্পূর্নভাবে বিলোপের ঘোষণা দেয় যেটির একটি অংশ অনুচ্ছেদ ৩৫এ - যেটিকে গত ৭০ বছর ধরে ভারতের সাথে কাশ্মীরের জটিল সম্পর্কের মূল ভিত্তি হিসেবে মনে করা হয়। অনুচ্ছেদ ৩৭০ কতটা তাৎপর্যপূর্ণ? এই অনুচ্ছেদটি রাজ্যটিকে বিশেষ ধরণের স্বায়ত্বশাসন ভোগ করার অধিকার দেয়, যা রাজ্যটিকে নিজস্ব সংবিধান, আলাদা পতাকা এবং আইন তৈরি করার অনুমোদন দেয়। পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা এবং যোগাযোগ বিষয়ক ব্যাপারের নিয়ন্ত্রণ থাকে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে। ফলস্বরুপ জম্মু ও কাশ্মীর নাগরিকত্ব, সম্পদের মালিকানা এবং মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত আইন নিজেরা তৈরি করার ক্ষমতা রাখতো। ভারতের অন্যান্য রাজ্যের মানুষকে জম্মু ও কাশ্মীরে জমি কেনা এবং সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করা থেকেও বিরত রাখতে পারতো ঐ অনুচ্ছেদের বদৌলতে। ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ ব্রিটিশ শাসনের অধীন থেকে স্বাধীন হওয়ার পর ভারতের সাথে যোগ দেয়া একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য ছিল কাশ্মীর; আর সংবিধানের বিধানটি ভারতের সাথে কাশ্মীরের আশঙ্কাজনক সম্পর্কের বিষয়টিরই একটি প্রতিফলন। কট্টর হিন্দুত্ববাদী দলগুলো এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে সরকার কেন এই অনুচ্ছেদ বিলোপ করলো? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল ভারত��য় জনতা পার্টি দীর্ঘসময় ধরে অনুচ্ছেদ ৩৭০ এর বিরোধিতা করে আসছে। ঐ অনুচ্ছেদের বিলোপ দলের ২০১৯ সালের নির্বাচনি তফসিলের অংশও ছিল। কাশ্মীরকে একত্রিত করা এবং ভারতের অন্যান্য রাজ্যের সাথে সমতা আনার জন্য ঐ অনুচ্ছেদের বিলোপ প্রয়োজন বলে যুক্তি দিয়ে আসছিল তারা। এপ্রিল-মে মাসে হওয়া সাধারণ নির্বাচনে জয় পাওয়ার পর সরকার তাদের ঐ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে একটুও দেরি করেনি। ঐ অনুচ্ছেদ বিলোপের সমালোচকরা ভারতের অর্থনৈথিক প্রবৃদ্ধির গতি শ্লথ হয়ে যাওয়ার সাথে এই সিদ্ধান্ত নেয়ার সম্পর্ক থাকতে পারে বলে ধারণা প্রকাশ করেছেন। তাদের যুক্তি, এর ফলে সরকার একটি বিকল্প পথ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে, যা অর্থনীতির গতি কমে যাওয়ার বিষয়টি থেকে মানুষের মনোযোগ সরিয়ে নিতে পেরেছে। অনেক কাশ্মীরি মনে করেন, কাশ্মীরের বাইরের মানুষকে সেখানকার জমি কেনার বৈধতা প্রদান করে বিজেপি আসলে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের জনতাত্বিক বৈশিষ্ট্য বদলাতে চায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ'র সোমবারের ঘোষণা অধিকাংশ ভারতীয়কে অবাক করলেও, এত বড় মাপের একটি সিদ্ধান্ত নিতে সরকারের নিশ্চিতভাবে যথেষ্ট পূর্বপ্রস্তুতি নিতে হয়েছে। কাশ্মীর ও পাকিস্তান সংক্রান্ত ইস্যুতে মি. মোদি'র অবস্থান শক্ত - এই বিষয়টি প্রচার করতে চাওয়ার অভিপ্রায়ের সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়েছে সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তটি। আরো পড়তে পারেন: সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ভারত শাসিত কাশ্মীর 'আরো দুটি মিসাইলের পরীক্ষা' চালালো উত্তর কোরিয়া 'থানার বাইরেই ভাইয়ের কান্না শুনতে পাইতেছিলাম' কী আছে এই কাশ্মীর সঙ্কটের মূলে যা দুই দেশকে বারবার যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে? আসলে কী পরিবর্তন হয়েছে? কাশ্মীরের এখন থেকে আলাদা কোনো সংবিধান থাকবে না এবং তারা ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী শাসিত হবে - যা ভারতের অন্যান্য সকল রাজ্যের ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। ভারতের সব আইন কাশ্মীরিদের জন্যও প্রযোজ্য হবে এবং ঐ রাজ্যের বাইরের মানুষও এখন থেকে সেখানে সম্পত্তির মালিকানা নিতে পারবে। সরকার বলছে, এর ফলে ঐ অঞ্চল সমৃদ্ধি লাভ করবে। সংসদে মি. শাহ বলেন, "অনুচ্ছেদ ৩৫এ এবং ৩৭০ রাজ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকর, তা জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষকে জানাতে চাই আমি।" "মূলত ঐ আইনের জন্যই গণতন্ত্র কখনো পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি, রাজ্যে দূর্নীতি বেড়েছ�� এবং কোনো উন্নয়ন হয়নি।" রাজ্যটিকে দু'টি ছোট এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে পরিণত করার জন্যও কাজ করছে সরকার। একটি অঞ্চলে একসাথে থাকবে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীর এবং হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ জম্মু। অন্য অংশটিতে থাকবে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ লাদাখ, যে অঞ্চলটি সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিকভাবে তিব্বতের সাথে বেশি জড়িত। বিরোধী দল কংগ্রেসের একজন সিনিয়র নেতা পি. চিদাম্বরম বলেছেন এই সিদ্ধান্ত একটি 'বিপজ্জনক পদক্ষেপ' এবং এর ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে বলে সংসদে সতর্কবার্তা দেন তিনি। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে কার্যত অচলাবস্থা জারি রয়েছে এই সিদ্ধান্তের বৈধতা কতটা? ভারতের সংবিধান অনুযায়ী, অনুচ্ছেদ ৩৭০ শুধুমাত্র 'রাজ্য সরকারের' সাথে সমঝোতার ভিত্তিতে পরিবর্তন করা যাবে। কিন্তু এক বছরের বেশি সময় ধরে জম্মু ও কাশ্মীরে রাজ্য সরকার বলতে আসলে কিছু নেই বললেই চলে। গত বছরের জুনে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালে কেন্দ্রের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়। এর অর্থ, কেন্দ্র সরকারের শুধুমাত্র ঐ রাজ্যে আইন বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা গভর্নরের অনুমোদন প্রয়োজন হতো। সরকার বলছে, এই পরিবর্তন আনা তাদের সাংবিধানিক আওতার মধ্যে এবং অতীতেও কেন্দ্রীয় সরকার এধরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এবিষয়ে বিশেষজ্ঞদের ভিন্নরকম মতামত রয়েছে। সংবিধান বিশেষজ্ঞ এ জি নুরানি বিবিসি হিন্দিকে বলেন, "এটা সম্পূর্ণভাবে অসাংবিধানিক সিদ্ধান্ত। ৩৭০ ধারার আইনী দিকটা পরিষ্কার। কেউ এটার বিলোপ ঘটাতে পারে না।" আরেকজন সংবিধান বিশেষজ্ঞ সুভাষ কাশ্যপ সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন যে এই নির্দেশ 'সংবিধান সম্মত' এবং এর কোনো 'আইনী বা সাংবিধানিক ত্রুটি নেই।' বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনী চ্যালেঞ্জ জানাতেই পারে, তবে কাশ্মীর ইস্যুটি ভারতের জন্য খুবই সংবেদনশীল। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলে কোনো রাজনৈতিক দলকে 'ভারতবিরোধী' হিসেবে চিহ্নিত করা হতে পারে - কাজেই বিরোধী দলগুলো নিশ্চিতভাবেই এ ধরণের কোনো পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে সচেতন থাকবে। অরাজনৈতিক কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের পক্ষেও তাই এধরনের কোনো পদক্ষেপ নেয়া যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের বিষয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি'র নেতৃত্বাধীন সরকার জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা হরণের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছে - তারা বলছে এটি একটি 'ঐতিহাসিক ভুল'এর সংশোধন। +text: ইন্দোনেশিয়ার জাম্বি প্রদেশের আকাশ যেন ভিনগ্রহের আকাশের মতো হয়ে গিয়েছিল জাম্বি প্রদেশের একজন বাসিন্দা আকাশের ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে মন্তব্য করেছেন, ওই আবছায়ার কার চোখ এবং গলায় যেন ব্যথা লাগছিল। ইন্দোনেশিয়ায় প্রতিবছর আগুনের কারণে ধোয়াটে কুয়াশা তৈরি হয়, যা পুরো দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। একজন আবহাওয়াবিদ বিবিসিকে বলেছেন, ওই অস্বাভাবিক রঙিন আকাশের ঘটনাটি ঘটেছে 'রেলিগ স্ক্যাটেরিং' নামের চলমান ঘটনার কারণে। জাম্বি প্রদেশের মেকার সারি গ্রামের বাসিন্দা ইকা উলান্দারি শনিবার দুপুরে রক্তের মতো লাল ওই আকাশের বেশ কয়েকটি ছবি তোলেন। ওই কুয়াশাচ্ছন্ন অবস্থার কারণে ওই দিনটি বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে বলে তিনি বলছেন। আরো পড়ুন: সাহারা মরুভূমির ধূলি যেভাবে ইংল্যান্ডের আকাশে ইন্দোনেশিয়ায় ড্রাগন বাঁচানোর লড়াইয়ে গ্রামবাসীরা ইন্দোনেশিয়ার যে গ্রামে মা ছাড়াই বড় হচ্ছে শিশুরা সাপ দেখিয়ে পুলিশের স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা আলোকচিত্রী পুনরায় নিশ্চয়তা দিয়ে বলছেন, এই ছবিগুলো বানোয়াট নয় একুশ বছরের এই তরুণী তার তোলা ছবিগুলো ফেসবুকে পোস্ট করেন। এরপরে সেগুলো এ পর্যন্ত ৩৪ হাজার বার শেয়ার হয়েছে। তবে তিনি বিবিসি ইন্দোনেশিয়াকে বলছেন, অনেক অনলাইন ব্যবহারকারী সন্দেহ প্রকাশ করেছিল যে, এই ছবিগুলো সত্যি কিনা। ''কিন্তু এটা সত্যি। এগুলো আসল ছবি এবং ভিডিও, যা আমি আমার মোবাইল ফোন দিয়ে তুলেছি।'' তিনি বলছেন, কুয়াশার ওই অবস্থা সোমবারে আরো বেশি ছিল। আরেকজন টুইটার ব্যবহারকারী একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন, যেখানে একই ধরণের আকাশ দেখা যাচ্ছে। ''এটা মঙ্গলগ্রহ নয়, এটা জাম্বি,'' লিখেছেন টুইটার ব্যবহারকারী যুনি শোফি ইয়াতুন নিসা। ''আমরা মানুষদের জন্য পরিষ্কার বাতাস দরকার, ধোঁয়া নয়।'' ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া দপ্তর বিএমকেজি বলছে, স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণের মাধ্যমে জাম্বি প্রদেশে এরকম বেশ কয়েকটি এলাকা পাওয়া গেছে, যেখানে ধোঁয়া জমাট বেধে ছড়িয়ে পড়েছিল। এশিয়ার সবচেয়ে ক্ষতিকর ধোঁয়ার সৃষ্টি ইন্দোনেশিয়ার এই বনভূমিতে? সিঙ্গাপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞানের অধ্যাপক কোহ তিয়ে ইয়োঙ ব্যাখ্যা করছিলেন যে, 'রেলিঙ স্ক্যাটেরিং' এ ধরণের বিশেষ ঘটনায় ব���শ কয়েকটি নির্দিষ্ট ধরণের অণু যুক্ত হয়ে থাকে, যা কুয়াশার একটি নির্দিষ্ট সময়ে দৃশ্যমান হয়ে থাকে ''ধোঁয়ার কারণে তৈরি হওয়া কুয়াশায় বেশিরভাগ অণুগুলো থাকে প্রায় এক মাইক্রোমিটার আকারের, কিন্তু আমাদের দেখা আলোর রঙ এসব অণু পাল্টায় না।'' তিনি বিবিসিকে বলছেন। ''সেখানে এরকম প্রায় ০.০৫ মাইক্রোমিটার বা এর চেয়েও ছোট অণু থাকে, যা হয়তো খুব বেশি আবছায়া তৈরি করে না।কিন্তু দিনের কোন একটা সময়ে সেটির পরিমাণ অনেক বেশি হতে পারে। তখন এর কারণে চারদিকে সাধারণ আলোর পরিবর্তে লাল আভার তৈরি হয়।'' তিনি বলছেন, দুপুরের ছবিগুলো তোলার কারণে আকাশ অনেক বেশি লাল দেখাচ্ছে। ''সূর্য যদি মাথার ওপরে থাকে এবং আপনি ওপরে তাকান, আপনি হয়তো সূর্য বরাবর তাকালেন, তখন আকাশ অনেক বেশি লাল দেখা যেতে পারে।'' অধ্যাপক কোহ বলছেন, এই ঘটনার ফলে বাতাসের তাপমাত্রার কোন পরিবর্তন হয় না। মেকার সারি গ্রামটি যেন পুরো লাল হয়ে গেছে এ বছরের আবছায়ার মাত্রা অন্য যেকোনো বছরের চেয়ে বেশি ছিল। এই আবছায়ার তৈরি হয়েছে ইন্দোনেশিয়ায় বিশাল এলাকাজুড়ে বুনো আগুন, যা মালয়েশিয়ার কিছু অংশেও ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত এরকম আগুনের ঘটনা ইন্দোনেশিয়ার শুকনো মৌসুমে, জুলাই থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে ঘটে থাকে। ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, বছরের প্রথম আট মাসে ৩ লাখ ২৮ হাজার ৭২৪ হেক্টর জমি আগুনে পুড়েছে। এই আগুনের একটি অংশের জন্য দায়ী বড় এবং ছোট আকারের কৃষকরা, যারা শুকনো মৌসুমের সুযোগে পাম অয়েল, পাল্প আর কাগজ তৈরির গাছ লাগানোর জন্য গাছপালা পুড়িয়ে দেয়। আগুন লাগিয়ে জমি পরিষ্কারের এই পদ্ধতি ওই এলাকার কৃষকের কাছে অনেক জনপ্রিয়, কারণ এটা তাদের কাছে সহজ পদ্ধতি। পাশাপাশি তাদের নতুন ফসলে কোন রোগ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনাও কমে যায়। কিন্তু কখনো কখনো এ ধরণের আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। ইন্দোনেশিয়ায় এভাবে আগুন লাগিয়ে জমি পরিষ্কার করা বেআইনি, তবে বছরের পর বছর ধরে এটা চলে আসছে। অনেকে মনে করেন, দুর্নীতি এবং দুর্বল সরকারি ব্যবস্থার কারণে এমন পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। । গত সপ্তাহের শেষে ইন্দোনেশিয়ার একটি প্রদেশের আকাশ পুরোপুরি লাল হয়ে যায়, যার কারণ ওই এলাকার বিশাল এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বুনো আগুন। +text: পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ��ংখ্যক টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানি সিরাম ইন্সটিটিউট। একটি নির্মাণাধীন ভবন থেকে আগুন শুরু হয়। কেন আগুন লেগেছে, তার কারণ এখনো জানা যায়নি। সেখানে দমকল বাহিনী আগুন নেভানোর কাজ করছে। পুনের মেয়র জানিয়েছেন, ৫ জন আগুনে মারা গেছেন। আগুন এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে বলে জানা যাচ্ছে। সিরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আদর পুনাওয়ালা এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, "দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই ঘটনায় কিছু প্রাণহানি হয়েছে।" তিনি বলেন, এর ফলে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার উৎপাদনে কোন প্রভাব পড়বে না, কারণ একাধিক জায়গায় তাদের এই টিকা উৎপাদনের ব্যবস্থা তারা প্রস্তুত রেখেছেন এ ধরণের যে কোন পরিস্থিতির মোকাবেলায়। বিবিসি মারাঠির স্থানীয় সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, সিরাম ইনস্টিটিউটের যে কমপ্লেক্সে আগুন লেগেছে সেটির নাম মঞ্জরী। সিরামের টিকা উৎপাদনের এখন যেটি মূল কারখানা সেখান থেকে মঞ্জরী অবশ্য বেশ খানিকটা দূরে, কয়েক মিনিটের ড্রাইভ। এই কমপ্লেক্সের একটি বিল্ডিংয়ের চতুর্থ ও পঞ্চম তলাতেই আগুন লেগেছে। সিরামের টিকা উৎপাদনের ক্ষমতা আরও বাড়ানোর লক্ষ্যেই এই নতুন উৎপাদন কেন্দ্রটি (মঞ্জরী) গড়ে তোলা হচ্ছিল। সিরাম ইনস্টিটিউট বলছে, এই আগুনের কারণে টিকা উৎপাদনের কাজে কোন ব্যাঘাত ঘটবে না। আগুন নেভানোর চেষ্টায় দমকল বাহিনী পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানি এই সিরাম ইনস্টিটিউট। এই কোম্পানির কাছ থেকেই তাদের উৎপাদিত ৩ কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা 'কোভিশিল্ড' কিনে আনছে বাংলাদেশ। আজই ভারত সরকারের উপহার হিসেবে বাংলাদেশে কোভিশিল্ডের ২০ লক্ষ ডোজ এসে পৌঁছেছে। বিমানবন্দর থেকে টিকাগুলো তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ইপিআই-এর গুদামে নিয়ে যাওয়া হবে এবং প্রাথমিকভাবে সেখানেই সংরক্ষণ করা হবে। আরো পড়ুন: দক্ষিণ এশিয়াতে ভারতের ভ্যাক্সিন কূটনীতি শুরু, বাদ শুধু পাকিস্তান টিকা দেয়ার জন্য চারটি হাসপাতাল নির্বাচিত, কুর্মিটোলা থেকে শুরু ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের পুনে শহরে অবস্থিত টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানি সিরাম ইনস্টিটিউটের একটি ফ্যাক্টরিতে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডে এপর্যন্ত ৫ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। +text: তাস খেলার কার্ডের মতো 'শাফল' করে যেতে হয় দ্রুত বইয়ের পাতা, তাতেই নাকি বইয়ের বিষয় জানা হয়ে যায়। তবে চীনের টিউশন সেন্টারগুলো বলছে, হলোওয়ের এই রেকর্ডটা চীনা ছেলেমেয়েদের কাছে কোন রেকর্ডই নয়, তারা এটা অনায়াসেই করতে পারে। এই টিউশন সেন্টারগুলো দাবি করছে তারা ছাত্র-ছাত্রীদের এমনভাবে তৈরি করতে পারে যে পাঁচ মিনিটেই পড়ে শেষ করতে পারে এক লাখ শব্দ। এসব টিউশন সেন্টারে যে কৌশল শেখানো হয় তার নাম 'কোয়ান্টাম স্পীড রিডিং।' এটি বেশ বিতর্কিত একটি পদ্ধতি। সম্প্রতি এই পদ্ধতিতে বই পড়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যায় বই পড়ার প্রতিযোগিতায় ছেলে-মেয়েরা দ্রুত বইয়ের পাতা উল্টে যাচ্ছে। স্পীড রিডিং নিয়ে প্রশ্নঃ তাস খেলার সময় যেভাবে 'কার্ড শাফল' করা হয়, অনেকটা সেভাবেই দ্রুত বইয়ের পাতা উল্টে যেতে হয় এই প্রতিযোগিতায়। যারা এই কোয়ান্টাম স্পীড রিডিং শেখান, তারা মনে করেন, এভাবে দ্রুত বইয়ের পাতা উল্টে বইটির বিষয় সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি হয় পাঠকের মনে। ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনায় যেন ভালো করে, সেজন্যে চীনের বাবা-মায়েরা কোন চেষ্টাই বাদ রাখছেন না। তবে সমালোচকরা এই দ্রুত পঠন পদ্ধতিকে একটা 'জোচ্চুরি' বলে বর্ণনা করছেন। তারা বলছেন, এরকম 'দ্রুতপঠনে' যে আদৌ কিছু শেখা যায়, তার কোন ভিত্তি নেই। এই দ্রুত পঠন প্রতিযোগিতার বিরুদ্ধে অনেক এলাকায় শিক্ষা কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থাও নিতে শুরু করেছেন। শেনঝেং এর শিক্ষা কর্তৃপক্ষ নির্দেশ জারি করেছেন যে, প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীরা 'কোয়ান্টাম স্পীড রিডিং' কোর্সে অংশ নিতে পারবে না। যারা এসব কোর্স চালায়, তাদের ব্যাপারেও তদন্ত শুরু হয়েছে। দুশ্চিন্তা কিছু বিশেষজ্ঞ বলছেন, এ ধরনের 'দ্রুত পঠনের' প্রশিক্ষণ ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর। কিন্তু তারপরও কোয়ান্টাম স্পীড রিডিং এর কোর্স বেশ জনপ্রিয় হয়েছে কয়েকটি কারণে। লেখাপড়ায় ভালো ফল করার জন্য চীনের ছাত্র-ছাত্রীরা এবং তাদের বাবা-মারা খুবই উদগ্রীব। ভালো রেজাল্ট না করলে জীবনে অনেক ভালো সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন, এরকম একটা আশংকা তাদের মধ্যে খুব বেশি। একারণেই আসলে এ ধরনের একটি কোর্সে অনেকে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। কোন কোন কোয়ান্টাম স্পীড-রিডিং কোর্সে ১৪ হাজার ডলার পর্যন্ত ফি দিতে হয়। জাপানি শিক্ষক ইউমিকো তোবিতানি প্রথম 'কোয়ান্টাস স্পীড রিডিং' পদ্ধতি চালু করেন। এই নিয়ে ২০০৬ সালে তিনি একটি বই প্রকাশ করেছিলেন। চীনা গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বেইজিং, শেনঝেং, গুয়াংজু এবং হাংজুর মতো শহরে অনেক টিউশন সেন্টার এখন স্পীড রিডিং কোর্স চালায়। চেংডুর একটি টিউশন সেন্টারের একজন প্রতিনিধি 'কভার নিউজ' বলে একটি ওয়েবসাইটকে জানিয়েছেন, এই কোর্সের ফি ৪,২০০ ডলার হতে ৮,৫০০ ডলার পর্যন্ত। তবে কোন কোন কোর্সের ফি প্রায় ১৪,০০০ ডলার পর্যন্ত। অন্যান্য খবরঃ হোলি আর্টিজান হামলা: সাতজনের মৃত্যুদণ্ড আদালত চত্বরে আইএস-এর প্রতীক প্রদর্শন নিয়ে প্রশ্ন ভারতে ৫৯ 'বাংলাদেশি' বন্দীর অনিশ্চিত ভবিষ্যত তবে যে বাবা-মারা তাদের সন্তানদের এরকম কোর্সে ভর্তি করছেন, অনলাইনে তাদের নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ চলছে। বিশেষজ্ঞরাও এরকম স্পীড রিডিং এর কার্যকারিতা নিয়ে সন্দিহান। বেইজিং এর 'টুয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের উপ-পরিচালক শিয়ং বিংকি বলেন, এই দ্রুত পঠন পদ্ধতির কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এটি শিক্ষা বিষয়ক সাধারণ বোধ-বুদ্ধিরও বিপক্ষে যায়। "কিন্তু তারপরও এই কোয়ান্টাম স্পীড রিডিং পদ্ধতি চীনে জনপ্রিয় হয়েছে, কারণ বাবা-মারা চান ছেলে-মেয়েরা যে কোন ভাবে সফল হোক। সেজন্যে তারা এখন সাফল্যের 'শর্টকাট' উপায় খুঁজছেন।" ২০১৮ সালে চীনের একটি পত্রিকা 'চায়না ইয়ুথ ডেইলি' এধরনেরই আরেকটি রিডিং কোর্সের নামে জোচ্চুরি চলছে বলে একটি খবর ফাঁস করেছিল। এই পদ্ধতির নাম ছিল 'ব্লাইন্ডফোল্ডেড রিডিং' বা চোখবেঁধে দ্রুত পঠন। ভালো কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার জন্য চীনে প্রতিযোগিতা খুবই তীব্র। টিউশন সেন্টারগুলো দাবি করতো, এই পদ্ধতিতে 'অডিও ব্রেইনওয়েভ রেজোনেন্স' বা শব্দ তরঙ্গ পাঠিয়ে মস্তিস্কের কিছু গ্ল্যান্ডকে সক্রিয় করা হয়। এর ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা যে কোন বিষয়, শব্দ বা প্যাটার্ন সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি করতে পারে। শিয়ং বিংকির মতে, চীনের বাবা -মায়েরা স্বপ্ন দেখেন তাদের ছেলেরা তাক লাগানো কোন সাফল্য দেখাবে। ছেলে-মেয়েরা রাতারাতি যাতে কোন ধরনের 'সুপারপাওয়ার' অর্জন করতে পারে, সেজন্যে তারা যা খুশি অর্থ খরচ করতেও রাজী। "বাবা-মাদের দুশ্চিন্তা হচ্ছে একবারও যদি ছেলে-মেয়েরা কোন সুযোগ হাতছাড়া করে, তাহলেই তারা পেছনে পড়ে যাবে।" "যারা ছেলে-মেয়েদের কোয়ান্টাম স্পীড-রিডিং কোর্সে পাঠাচ্ছে, তাদের মনেও হয়তো সন্দেহ আছে। কিন্তু তারপরও এটি কাজ করতে পারে এমন চিন্তাও তাদের মধ্যে কাজ করে। অন্য সবাই যখন এই কোর্স করছে, তখন আমার সন্তান না ���রলে ও পিছিয়ে পড়বে, এটাই তাদের দুশ্চিন্তা।" বিজ্ঞান সাক্ষরতার হার বিজ্ঞান বিষয়ে মানুষের অজ্ঞতাও এটার অন্যতম কারণ বলে মনে করেন চীনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এডুকেশনাল সায়েন্সের গবেষক চু ঝাওহুই। চীনে বিজ্ঞান সাক্ষরতার হার নিয়ে ২০১৮ সালে যে জরিপ হয়, তাতে দেখা যায় জনসংখ্যার মাত্র ৮ দশমিক ৫ শতাংশের এরকম সাক্ষরতা আছে। বিজ্ঞান সাক্ষরতার মানে হচ্ছে বিজ্ঞান বিষয়ক বিষয়গুলো নিয়ে সচেতনভাবে চিন্তা-ভাবনা করতে পারার ক্ষমতা। পরীক্ষায় ভালো গ্রেড পাওয়াটাই চীনের শিক্ষা ব্যবস্থায় বেশি গুরুত্ব পায়। "প্রতারিত হওয়া বাবা-মাদের অনেকেই এটা বিশ্বাস করেছেন যে বইয়ে ছাপানো তথ্য কোয়ান্টাম মেথডের মাধ্যমে মানুষের মগজে ঢুকিয়ে দেয়া সম্ভব। কিন্তু এটা একেবারেই সম্ভব নয়।" কিন্তু শর্টকাট রাস্তায় জ্ঞান অর্জনের এই ফাঁদে যেন বাবা-মায়েরা পা না দেন, কিভাবে তা নিশ্চিত করা সম্ভব? শিয়ং বিংকি মনে করেন, এজন্যে চীনের টিউশন সেন্টারগুলোকে নিয়ম-নীতির অধীনে এনে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। কারণ কোয়ান্টাম স্পীড-রিডিং প্রশিক্ষণ যারা দিচ্ছে, তাদের বেশিরভাগ শিক্ষা বিষয়ক কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবন্ধিত। আর চীনে শিক্ষার মূল্যায়ন যেভাবে করা হয়, সেটারও সংস্কার দরকার, বলছেন তিনি। ব্রিটেনের ড্যান হলোওয়ে হচ্ছেন ইউরোপের দ্রুততম পাঠক। ২০১৮ সালে ইউরোপে দ্রুত পঠনের যে প্রতিযোগিতা হয়েছে সেখানে তিনি প্রতি মিনিটে ১,৭০০ শব্দ পড়ে বিজয়ী হন। +text: যখন ঔষধে আর কাজ হয়না তখনই প্রয়োজন হয় "ওপেন হার্ট সার্জারি"। তখন বয়স ছিল ৬৩ বছর। তিনি বলছেন, "মনে হতো শ্বাস বন্ধ হয়ে যাবে। কিছুক্ষণ না হেঁটে দাড়িয়ে থাকলে তারপর একটু ভালো লাগতো।" চিকিৎসকের কাছে গেলে তাকে জানানো হল চর্বি জমে হৃদযন্ত্রের রক্তনালী বন্ধ হয়ে গেছে। ''হৃদযন্ত্রে তিনটি "ব্লক" ধরা পড়ল। শুরুতে হৃদযন্ত্রে এনজিওপ্লাস্টি করার কথা বলা হল,'' বলছিলেন মি. হাসান। অর্থাৎ রিং পরিয়ে তার রক্তনালীর সরু পথ বড় করা দরকার ছিল। কিন্তু সেটি করা সম্ভব হয়নি। তাকে ওপেন হার্ট সার্জারি করার পরামর্শ দিলেন চিকিৎসকেরা। মি. হাসান বলছেন, "পা থেকে রগ কেটে নিয়ে, তারপর পুরো বুক কেটে খুলে দুই ভাগ করে সেই রগ হৃদযন্ত্রে বসিয়ে দেয়া হয়েছে। ওরা বলেছিল ঘণ্টা তিনেক সময় লাগবে। কিন্তু পরে শুনলাম আমাকে দশ ঘণ্টার মতো বেহু��শ করে রাখা হয়েছিলো।" এই অপারেশন পদ্ধতিতে বন্ধ হয়ে যাওয়া রক্তনালীকে বাদ দিয়ে নতুন রগকে রক্ত সঞ্চালনের জন্য ব্যবহার করা হয়। মি. হাসান এখন বেশ ভালোই আছেন। শুধু দুই কিলোগ্রামের উপরে ভারি কোন কিছু তোলা ও বহন করা নিষেধ। বেশি চর্বি, তেল ও ভাজাপোড়া খাওয়াও নিষেধ। বেশি সবজি জাতীয় খাবার খেতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে তাকে। ওপেন হার্ট সার্জারি কখন দরকার হয়? বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে কার্ডিয়াক সার্জারির প্রধান অধ্যাপক ডা. অসিত বরণ অধিকারী বিস্তারিত জানিয়ে বলছিলেন, "হার্টের যে কোনো সমস্যা যখন ঔষধ দিয়ে আর চিকিৎসা করা সম্ভব হয়না, তখনই আমরা ওপেন হার্ট সার্জারি ও বাইপাস সার্জারি করি। এটা এক এক সমস্যার জন্য ভিন্ন।'' তবে তিনি জানান এই অস্ত্রোপচারের জন্য হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসের কাজ একটি যন্ত্র দিয়ে চালানো হয় আর সেটিকেই বলা হয় ওপেন হার্ট সার্জারি। ওপেন হার্ট সার্জারির সময় হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসের কাজ একটি যন্ত্র দিয়ে চালানো হয়। তিনি বলছেন, বয়স্কদের মধ্যে ইদানিং চর্বি জমে হৃদযন্ত্রের রক্তনালী বন্ধ হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এটি সবচেয়ে বেশি দরকার হচ্ছে। আর শিশুদের বেলায় জন্মগত সমস্যার ক্ষেত্রে। যেমন হৃদযন্ত্রে ফুটো নিয়ে যে শিশুরা জন্ম নেয় অথবা হৃদযন্ত্রের রক্তনালী জন্মগতভাবে যাদের সরু তাদের এটি দরকার হয়। আরো পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক: যেসব স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অবহেলা নয় হার্ট অ্যাটাক: যে বিষয়গুলো কখনো উপেক্ষা করবেন না জন্মগতভাবে শিশুর হৃদযন্ত্রে সমস্যা থাকলে বেশিরভাগ সময় বাইপাস সার্জারির দরকার হয় বলে জানালেন তিনি। বয়স্কদের ক্ষেত্রে এখন চর্বি জমে হৃদযন্ত্রের রক্তনালী বন্ধ হয়ে যাওয়া খুব বেশি দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে শিশুদের ক্ষেত্রে হৃদযন্ত্রে ফুটো। কীভাবে এই অস্ত্রোপচার করা হয়? নানা ভাবে ওপেন হার্ট সার্জারি ও বাইপাস সার্জারি করা হয়। ঠিক বুকের মাঝখানে চিরে ফেলে, হাড় কেটে অথবা বুকের পাশে কেটেও এই সার্জারি হতে পারে। বুকের হাড় না কেটেও এই অস্ত্রোপচার সম্ভব। বুকের খাঁচার হাড়ের মাঝখান দিয়ে হাড় না কেটে এটি করা সম্ভব। হার্ট অ্যাটাক কী ও কেন হয়? ডা. অসিত বরণ অধিকারী বলছেন, এর পুরোটাই নির্ভর করে কীধরনের সমস্যা তার উপর। তবে মূল বিষয় হল হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসের কাজ চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অস্ত্রোপচারের সময় কৃত্রিম যন্ত্র দরকার হয়। হৃদযন্ত্রের রক্তনালী যদি চর্বি জমে বন্ধ হয়ে যায় যখন শরীরের অন্য কোথাও থেকে রক্তনালী কেটে নিয়ে তা বসানো হয়। ডা. অধিকারী বলেছেন, "বিষয়টি হল এরকম- যেমন ধরুন একটি রাস্তার মাঝখানে কোথাও মাটি পড়ে আটকে গেছে। তখন যাবার জন্য ওই রাস্তার পাশ দিয়ে আরেকটি পথ তৈরি করতে হয়। শরীরেও সেভাবে অন্য কোথাও থেকে রক্তনালী এনে ওইরকম একটা বিকল্প পথ তৈরি করা হয় রক্ত চলাচলের জন্য।" ঝুঁকি কতটা? ডা. অধিকারী বলেছেন, সেরকম ঝুঁকি এখন আর নেই। এই ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার বড়জোর এক থেকে দুই শতাংশ। তবে যদি রোগীর অন্য কোন শারীরিক সমস্যা থাকে তবে সমস্যা হতে পারে। তিনি বলছেন, "যেমন ডায়াবেটিস থাকলে ইনফেকশনের ভয় থাকে। হাইপার-টেনশন থাকলে ঝুঁকি বাড়ে। যাদের শরীরে চর্বি বেশি থাকে তাদের পোস্ট অপারেটিভ ঝামেলা হয়।" খরচ কতটা? বিভিন্ন হাসপাতালে এর ভিন্ন-ভিন্ন খরচ। যেমন বিএসএমএমইউতে পুরো প্যাকেজ দেড় লাখের মতো বলে জানাচ্ছেন ডা. অধিকারী। তবে তিনি বলছেন বেসরকারি কোন্ হাসপাতালে আপনি যাচ্ছেন বা কোন্ চিকিৎসক অস্ত্রোপচার করছেন তার উপর নির্ভর করবে খরচ কতটা হবে। সেক্ষেত্রে খরচ আরও বেশি হতে পারে। নবজাতক শিশুরা অনেক সময় জন্মগতভাবে হৃদযন্ত্রে ফুটো নিয়ে জন্মায়। হৃদযন্ত্রের সমস্যায় আর কী ব্যবস্থা রয়েছে? বয়স্কদের ক্ষেত্রে হৃদযন্ত্রের ভালভ্ প্রায়ই নষ্ট হয়ে যায়। বিশেষ করে দুটো। সেই ভালভ্ কেটে ফেলে দিয়ে নতুন টিসু দিয়ে ভালভ্ তৈরি করে লাগিয়ে দেয়া হয়। অথবা যান্ত্রিক ভালভ্ বসানো হয়। হোমোগ্রাফ বলেও একটি ব্যবস্থা রয়েছে ভালভ্ নষ্ট হলে। কিন্তু বাংলাদেশে সেটি খুব একটা পাওয়া যায় না। হৃদযন্ত্রের বিদ্যুৎ তরঙ্গ চলাচল বাধাগ্রস্ত হলে বসানো হয় পেসমেকার যন্ত্র। অর্থাৎ বলা যেতে পারে এক ধরনের কৃত্রিম ব্যাটারির মতো যন্ত্র বসিয়ে হৃদযন্ত্রে এই তরঙ্গ তৈরি করা হয়। আধুনিক ব্যবস্থা বাংলাদেশে কতটা পাওয়া যায়? বাংলাদেশ নানা ধরনের প্রযুক্তি এখন পৌঁছে গেছে বলে জানালেন ডা. অধিকারী। আশির দশকের শুরুর দিক থেকে ওপেন হার্ট সার্জারি ও পেসমেকার বসানো হচ্ছে বাংলাদেশে। রোগী সজাগ থাকা অবস্থায় অস্ত্রোপচার করার প্রযুক্তি রয়েছে। পৃথিবীতে এখন অনেক এগিয়েছে জিন প্রযুক্তি। কিন্তু বাংলাদেশে যন্ত্রপাতির অনেক অভাব রয়ে��ে। সেটির তুলনা করতে গিয়ে ডাঃ অধিকারী বলছেন, "ধরুন আমেরিকার প্লেন আছে হাজার আর আমাদের আছে দশটা। সেরকম হওয়ার কারণে আমাদের সমস্যা হয়।" তিনি আরও বলছেন, নবজাতকরা হৃদযন্ত্রে সমস্যা নিয়ে জন্মালে সেটির অস্ত্রোপচারের ব্যাপারেও বাংলাদেশ বেশ পিছিয়ে রয়েছে। সর্বশেষ আবিষ্কার হওয়া নানা পদ্ধতির নাম হৃদরোগের চিকিৎসায় পৃথিবীতে এখন অনেক ধরনের প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। যেমন মানুষের তৈরি কৃত্রিম হৃদপিণ্ড। এছাড়া জিন প্রকৌশল, জীব প্রযুক্তি দিয়ে ল্যাবে হৃদপিণ্ড তৈরি। তিনি বলছেন, "মানবদেহ থেকে কিছু সেল নিয়ে হৃদপিণ্ড তৈরি। মায়ের পেটে যেভাবে হৃদপিণ্ড তৈরি হয়, সেরকম পরিবেশ তৈরি করে হৃদপিণ্ড তৈরি। এসব অবশ্য এখনো মানবদেহে ব্যবহার শুরু হয়নি।" তবে এই ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা এখন অনেক এগিয়েছেন। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে। অন্যান্য খবর: নতুন শর্ত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ব্যর্থ করবে: মিয়ানমারের মন্ত্রী থানা থেকে বেরিয়েই গায়ে আগুন দিল তরুনীটি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বান্ধবীকে নিয়ে বিতর্কের ঝড় চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির মোহাম্মদ ফয়জুল হাসান বছর দুয়েক আগে হঠাৎ টের পেলেন সাধারণ চলাফেরায় তার বুক থেকে গলা পর্যন্ত ব্যথা করছে। +text: অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুদের ব্যবহারের জন্য তৈরি একটি ফেসবুক অ্যাপ প্রত্যাহার করে নিতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানিয়েছেন একশো জনের বেশি শিশু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ তাদের বক্তব্য, এটি দায়িত্বহীন একটি পদক্ষেপ,যা শিশুদের মধ্যে ফেসবুকের ব্যবহার বাড়াবে। কারণ এসব শিশুরা এখনো সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত নয়। তারা বলছেন, সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করতে গিয়ে ডিজিটাল যন্ত্রপাতির অতিরিক্ত ব্যবহার শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। তবে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বলছে, অনলাইন বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা করেই ওই অ্যাপটি তৈরি করা হয়েছে। আরো পড়তে পারেন: যে সফটওয়্যার হয়তো মৃত্যুর খবর দিতে পারবে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর রায় ঢাকায় গ্রেফতার বাংলাদেশে শিশুদের অনলাইন ব্যবহার বা ফেসবুক আসক্তি নিয়ে অভিভাবকরা কতটা সতর্ক? ঢাকার একজন অভিভাবক শিখা রহমান বলছেন, ''এখনকার বাচ্চারা এতটাই বেশি জানে যে, তাদের সাথে পুরোপুরি পেরে ওঠা যায় না। ওরা হয়তো মোবাইলে কিছু করছে বা দেখছে, যখনি আমি সেটা দেখতে যাই, সাথে সাথে বন্ধ করে দেয়। অথবা আমাকে গেম বের করে দেখায়। কিন্তু ও হয়তো অন্যকিছু দেখছিল, কিন্তু আমার তো সেটা বোঝার উপায় নেই। এ নিয়ে আমরা খুবই টেনশনে থাকি।'' তার দুইটি সন্তান রয়েছে। দুজনেরই মোবাইল ফোন রয়েছে। বাসায় ইন্টারনেট সংযোগ থাকায় ওয়াইফাই ব্যবহার করে তাদের মোবাইল বা কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এখন তারা দেখছেন, সন্তানরা ফেসবুকে বেশিরভাগ সময় পার করছে। ফেসবুকে অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানরা কাদের সঙ্গে কথা বলছে, কাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করছে, এটা অভিভাবকদের কতটা জানা থাকে? শিখা রহমান বলছেন, ''মা-বাবার কাছে তারা এসব কিছুই জানায় না। আগে যেমন কোন বন্ধুর সঙ্গে কথা বলতে আমার কাছে টাকা চাইতো, কিন্তু এখন ইন্টারনেটে কথা বলছে, আমরা কিছুই জানি না।'' ঢাকার একজন অভিভাবক বলছেন, সন্তানরা এত বেশি সময় ইন্টারনেটে থাকে যে, তিনি উদ্বেগ বোধ করেন প্রযুক্তি সম্পর্কে ভালো ধারণা না থাকায় তারা কি দেখছে, কি করছে, সেটিও তিনি পুরোপুরি বুঝতে পারেন না। তিনি বলছেন, ''আমার বাচ্চার ছোট বেলা থেকেই চোখ অনেক ভালো ছিল। কিন্তু তাকে মোবাইল কিনে দেয়ার পর থেকেই চোখ খারাপ হতে শুরু করেছে। এখন তার চোখে হাই পাওয়ারের চশমা।'' বাসায় একসময় ইন্টারনেট বন্ধও করে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পড়ে সন্তানদের চাপে বাধ্য হয়ে আবার সংযোগ নিতে হয়েছে। তিনি বলছেন, ''তারা এমন করে যে, আর না নিয়েও পারিনি।'' ''না ঘুমিয়ে, না পড়ে সারাক্ষণই দেখা যায় মোবাইল নিয়ে পড়ে রয়েছে। খাওয়ার সময় ভাত মাখিয়ে খেতে পারে না। অথচ তাকে কম্পিউটারের সামনে না দিলে বা মোবাইল না দিলে হয়তো খেলই না, টেবিলে আসলোই না।'' ঢাকার এই অভিভাবক মনে করেন, যুগের সাথে তাল মেলাতে ইন্টারনেট, ফেসবুক ব্যবহার করতে না দিয়েও উপায় নেই। তাদের পড়াশোনার কাজেও লাগে। কিন্তু ন্তিনি বলছেন, ''ক্ষতিকর বিষয়গুলো এড়িয়ে তাদের যদি শুধুমাত্র ভালোটা দিতে পারতাম, তাহলে আমার অনেক ভালো লাগতো। কিন্তু তার কোন উপায় আছে কিনা, তা আমি জানি না।'' বিবিসির এ রকম আরো খবর: ফেসবুকের শুদ্ধি অভিযান ও ‘লাইকের রাজা’ বৃত্তান্ত যেভাবে ছড়ায় সাংবাদিক ও পুলিশের বচসার ভিডিও 'কেন আমি ফেসবুকে ইচ্ছেমতো ছবি দিতে পারি না' ভারতে শহুরে তরুণদের বহু ফেসবুক ফ্রেন্ডই অচেনা শিশুদের ব্যবহারের জন্য তৈরি একটি ফেসবুক অ্যাপ প্রত্যাহার করে নিতে ফেসবু��� কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানিয়েছেন একশো জনের বেশি শিশু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। +text: ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় তারকাদের একজন সালমান খান আইন ভঙ্গ করার দায়ে বিভিন্ন সময় অভিযুক্ত হয়েছেন এই বলিউড তারকা। শুধু বিরল প্রজাতির প্রাণী শিকারই নয়, ২০০২ এ মুম্বাইয়ে গাড়ি দুর্ঘটনায় গৃহহীন চারজনকে আহত ও একজনকে হত্যার অভিযোগেও অভিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি। সাবেক প্রেমিকাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছনা করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু তারপরও সালমান খান ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় সিনেমা তারকাদের মধ্যে একজন। ৫২ বছর বয়সী এই তারকা প্রায় ১০০ হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। সিনেমা সংশ্লিষ্ট অনেক পুরস্কারও পেয়েছেন সালমান খান। শিক্ষিত মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে শ্রমজীবি দরিদ্র শ্রেণী পর্যন্ত ভারতীয় সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে তাঁর। সালমান খান বিভিন্ন সময় নানা রকম বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। বিতর্কের সাথে বসবাস কিন্তু জনপ্রিয় নায়কের পাশাপাশি বেপরোয়া জীবনযাপন করা উশৃঙ্খল এক সুপারস্টারের ভাবমূর্তিও তৈরী করেছেন তিনি। তবে বিতর্ক আর দুর্ব্যবহারের অভিযোগ থাকলেও সালমানের ফ্যানরা সবসময়ই তাঁকে সমর্থন দিয়েছেন। এমনকি তাঁর ভক্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েছে। ব্যবসায়িকভাবে দারুণ সফল সিনেমা তৈরীর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বিশাল জনপ্রিয়তা রয়েছে তাঁর। সালমানের ফেসবুক পেইজে লাইকের সংখ্যা সাড়ে তিন কোটির বেশী। টুইটারে তাঁর অনুসরণকারীও সোয়া তিন কোটি। কিন্তু খ্যাতনামা চিত্রনাট্যকার সেলিম খানের তিন ছেলের মধ্যে জেষ্ঠ্য সালমানের চরিত্রের অন্য দিকটিও বেশ সমালোচিত। বিভিন্ন পার্টিতে তাঁর নানাধরনের কীর্তিকলাপ ও সহ-অভিনেত্রীদের সাথে তাঁর সম্পর্ক একসময় বলিউডের কানাঘুষার প্রধান উপাদান ছিল। এমনও অভিযোগ আছে, এক রেস্টুরেন্টে ক্ষুদ্ধ হয়ে সাবেক এক প্রেমিকার মাথায় এক বোতল কোমল পানীয় ঢেলে দিয়েছিলেন তিনি। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য একটি দাতব্য সংস্থার কাজে সালমান খান অভিনেত্রী ও সাবেক মিজ ওয়ার্ল্ড ঐশ্বরিয়া রাইয়ের সাথে তাঁর সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর ঐশ্বরিয়া অভিযোগ করেছিলেন যে সালমান তাঁকে শারীরিকভাবে আঘাত করেছে। সালমান খান এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে এই 'ব্যাড বয়' ভাবমূর্তি কাটাতে গ��� কয়েক বছর নানাধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন এই অভিনেতা। পরিবার ও ভাইদের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধের জন্য সবসমই প্রশংসিত সালমান খান। বন্ধুদের তো বটেই, কখনো কখনো অচেনা মানুষকে সাহায্য করতেও পিছপা হননা বলে সুনাম রয়েছে সালমানের। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা ও চিকিৎসার উদ্দেশ্যে কয়েকবছর আগে তিনি 'বিইং হিউম্যান' নামের একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান শুরু করেন যারা টি-শার্ট ও অন্যান্য পণ্য বিক্রি করে মুনাফার টাকা দিয়ে দাতব্য কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। নারীদের সাথে সম্প্রতি তাঁর আচরণ অনেক পরিণত হলেও দুই বছর আগে কাজের ব্যস্ত সূচির উদাহরণ টানতে গিয়ে গিয়ে "ধর্ষিতা নারীর মত অনুভব হচ্ছে" বলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তিনি। আরেকটি পৃথক ঘটনায় তিনি বলেছিলেন যে ধূমপান, মদ্যপান ও কফির মত "দোষ" ছাড়তে পারলেও নারীলিপ্সা তিনি ছাড়তে পারবেন না। এই ঘটনার পর ভারতের জাতীয় নারী কমিশন তাঁকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য আদেশ দেয়। সালমানের বাবা সেসময় বলেন মি.খানের এই উক্তি "যথাযথ নয়"। তাঁর ভাইয়েরা তার পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইলেওে সালমান ক্ষমা চাইতে অস্বীকৃতি জানান। নিজের আইনজীবির মাধ্যমে সালমান খান কমিশনকে জানিয়েছ যে তারা 'এধরণের বিষয়ে কথা বলার অধিকার রাখে না'। এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি অপরাধমূলক কাজের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় শাস্তি পাওয়া থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন তিনি। বিভিন্ন অপরাধ সংঘটনের দায়ে একাধিকবার অভিযুক্ত হয়েছেন সালমান খান আইনের সাথে খণ্ডযুদ্ধ ২০০২ সালের গাড়ি দুর্ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ায় ২০১৫'র মে মাসে তাঁকে পাঁচবছরের কারাদন্ডের শাস্তি দেয় আদালত। তবে ঐ বছরের ডিসেম্বরেই উচ্চ আদালত ‌এই রায় খারিজ করে দেয়। গতবছর ঐ মামলার বাদী সুপ্রীম কোর্টে আপিল করে। মামলাটি বর্তমানে সেখানে বিচারাধীন আছে। ভারতের পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্য রাজস্থানে ১৯৯৮ সালে কৃষ্ণা হরিণসহ সংরক্ষিত হরিণ শিকারের দায়ে অভিযুক্ত হন তিনি। বৃহস্পতিবার আদালতের বিচারক তাঁকে 'স্বভাবসিদ্ধ অপরাধী' বলে আখ্যা দিয়ে পাঁচ বছরের কারাদন্ডের আদেশ দেন। তবে তাঁর দিন কয়েকের বেশী জেল খাটার সম্ভাবনা কম। তাঁর আইনজীবিরা জানিয়েছেন তারা সালমানের জামিনের জন্য আবেদন করেছেন এবং এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। পাঁচ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে সালমান খানকে বিপন্নপ্রায় প্রাণী হত্যার দায়ে সালমানের বিরুদ্ধে করা চারটি মামালার দু'টিতে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন ২০০৬ সালে। সেবারও তাঁকে পাঁচ বছরের কারাদন্ড দেয়া হলেও এক সপ্তাহের মধ্যেই জামিনে ছাড়া পেয়ে যান তিনি। ২০১৬'র জুলাইয়ে রাজস্থানের হাইকোর্ট তাঁর দন্ডাদেশ বাতিল করে দেয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রীম কোর্টে একটি আপিল করা হলেও কবে আদেশ আসবে তা নিশ্চিত নয়। ২০ বছর আগে কৃষ্ণ হরিণ শিকারের দায়ে পাঁচ বছরের কারাদন্ডের শাস্তি পাওয়া সালমান খান বিভিন্ন সময় নানারকম বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। +text: এ জন্য নিজের বাসার ছাদে গড়ে তুলেছেন অভয়াশ্রম। আইইউসিএন বলছে, বিশ্বে প্রায় পঁচিশ লাখের মতো প্রাপ্তবয়স্ক চিল রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন ও মানুষের বিরূপ আচরণের শিকার হয়ে চিলের এই সংখ্যা কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। চিলগুলোকে সেবাশুশ্রূষা করার পর বুনো পরিবেশে টিকে থাকার উপযোগী করে ছেড়ে দেওয়া হয়। কীভাবে এটা করেন মি. হক? দেখুন বিবিসি বাংলার শাহনেওয়াজ রকির তৈরি ভিডিওতে: আহত চিল উদ্ধার করে চিকিৎসা দেন পুরনো ঢাকার রাফিদ হক সোয়াদ। +text: বয়ঃসন্ধিকালের সীমানা এখন উনিশ ছাড়িয়ে ২৪ বছর পর্যন্ত পৌঁছে গেছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা এক নতুন গবেষণার ভিত্তিতে বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, আগে যা ভাবা হতো, এই বয়ঃসন্ধিকালের মেয়াদ আসলে তার চেয়ে অনেক বেশি। দশ বছর বয়সে শুরু হয়ে তা চলে ২৪ বছর পর্যন্ত। এর আগে উনিশ বছর বয়সকেই বয়ঃসন্ধিকালের শেষ সীমা বলে মনে করা হতো। কেন মানুষের বয়ঃসন্ধিকাল বলে সময়টার মেয়াদ বাড়ছে, তার নানা কারণ দেখিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তরুণ ছেলে-মেয়েরা এখন অনেক দীর্ঘ সময় ধরে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিয়ে করতে এবং সন্তান নিতে দেরি হচ্ছে। এবং এসবের ফলে কখন মানুষ আসলে 'প্রাপ্তবয়স্ক' হচ্ছে সেই ধারণাও বদলে যাচ্ছে। 'ল্যান্সেট চাইল্ড এন্ড এডোলেসেন্ট হেলথ জার্নালে' এ নিয়ে বিজ্ঞানীরা একটি লেখা প্রকাশ করেছেন। সেখানে তারা বলেছেন, আইনকে যুগোপযোগী করে বয়ঃসন্ধিকালের সংজ্ঞা নতুন করে নির্ধারণ করার সময় এসেছে। তবে অন্য একজন বিশেষজ্ঞ এর বিরুদ্ধে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এর ফলে তরুণদেরকে অপরিপক্ক বলে বিবেচনার ঝুঁকি আছে। বয়ঃসন্ধিকালের শুরু মানুষের মস্তিস্কের একটি অংশ, যা 'হাইপোথ্যালামাস' নামে পরিচিত, সেখান থেকে ��খন হরমোন নিঃসরণ শুরু হয়, তখন থেকেই বয়ঃসন্ধিকালের শুরু বলে মনে করা হয়। এই হরমোন তখন মানুষের শরীরের পিটুইটারি গ্ল্যান্ড এবং গোনাডাল গ্ল্যান্ডগুলোকে সক্রিয় করে তোলে। আগে সাধারণত ১৪ বছর বয়সের দিকে মানুষের শরীরে এই পরিবর্তন ঘটতো। আরও পড়ুন: প্রত্যাবাসন চুক্তির বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের বিক্ষোভ ইংলিশ চ্যানেলে ব্রিজ: বরিস জনসনের প্রস্তাবে হাসাহাসি কিন্তু উন্নত দেশগুলোতে যেভাবে বিগত শতকে মানুষের স্বাস্থ্য এবং পুষ্টির ব্যাপক উন্নতি হয়েছে, তার ফলে বয়ঃসন্ধি শুরুর সময় নেমে আসে দশ বছরের কাছাকাছি। যুক্তরাজ্যের মতো শিল্পোন্নত দেশে গত দেড়শো বছরে মেয়েদের ঋতুমতী হওয়ার গড় বয়স প্রায় চার বছরে কমে এখন দশে নেমে এসেছে। প্রায় অর্ধেক মেয়ের ঋতুস্রাব এখন শুরু হয় ১২ হতে ১৩ বছর বয়সে। শারীরিক বৃদ্ধি যখন থামে কেন বয়ঃসন্ধিকালের সংজ্ঞায় এর বয়সসীমা আরও বাড়ানো উচিৎ তা নিয়ে নানা ধরণের যুক্তি দেয়া হচ্ছে। একটা যুক্তি হচ্ছে মানুষের শরীর এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সময় ধরে বাড়ে। যেমন, মানুষের মস্তিস্ক এখন বিশ বছর বয়সের পরেও বিকশিত হতে থাকে। এটি আগের চেয়ে দ্রুত এবং অনেক বেশি দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে। আর অনেক মানুষের 'আক্কেল দাঁত' এখন ২৫ বছরের আগে গজায় না। জীবনের মাইল-ফলক মানুষ এখন অনেক বেশি বয়সে বিয়ে করছে এবং তাদের সন্তান নেয়ার বয়সও পিছিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের হিসেবে অনুযায়ী ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে ২০১৩ সালে পুরুষদের প্রথম বিয়ের গড় বয়স ছিল ৩২ দশমিক ৫ বছর এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ৩০ দশমিক ৬ বছর। ১৯৭৩ সালের তুলনায় প্রথম বিয়ের গড় বয়স প্রায় ৮ বছর বেড়ে গেছে। যে বিজ্ঞানীরা এই গবেষণা চালিয়েছেন, তাদের প্রধান অধ্যাপক সুজান সয়্যার বলেন, যদিও যুক্তরাজ্যে ১৮ বছর বয়সেই একজন আইনত প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে গণ্য হতে শুরু করেন, তারা কিন্তু পুরোপুরি প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন শুরু করেন আরও অনেক পরে। তাঁর মতে, দেরীতে সংসার বাঁধা, দেরীতে বাবা-মা হওয়া, অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে বিলম্ব হওয়া-- এসবের ফলে 'বয়ঃসন্ধিকালের' সীমানা এখন অনেক সম্প্রসারিত হয়েছে। মানুষের জীবনের যে সময়টিকে বয়ঃসন্ধিকাল বলে ধরা হয়, সেটা কত বছর ধরে চলে? +text: বাড়ির পাশে খালি প্লটে তার মরদেহ চাপা দেয়া ছিল। গতকা�� মঙ্গলবার রাতে তাদের ঢাকার বনানী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গাওজিয়াং হুই নামের ওই চীনা নাগরিক বাংলাদেশে পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য চীন থেকে পাথর ও নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। আজ এক সংবাদ সম্মেলনে এই ব্যাপারে বিস্তারিত জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র মাসুদুর রহমান জানিয়েছেন, চীনা ওই নাগরিক যে বাড়িতে থাকতেন, গ্রেফতার হওয়া দুজন সেখানে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তারা ওই বাড়ির ছাদে একটি ঘরে বসবাস করতেন। পুলিশ বলছে, চীনের ওই ব্যক্তিকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার দিন গ্রেফতারকৃতরা ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরা থেকে ভিডিও রেকর্ড না হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলো। আরো পড়ুন: বাংলাদেশের মানুষ কেন নির্মম হয়ে উঠছে? ভারত ও চীনের সাথে কিভাবে ভারসাম্য করছে সরকার পুলিশ জানিয়েছে, অর্থ চুরিই ছিল হত্যার পেছনে মুল কারণ। গাওজিয়াং হুইকে হত্যার পর তার ফ্ল্যাট থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা চুরি করা হয়। হত্যার পর তার মরদেহ গুম করার চেষ্টায় পাশের খালি প্লটে মাটি চাপা দেয়া হয়। চুরি করা অর্থের অর্ধেকের মতো উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। গত বুধবার বনানীর একটি খালি প্লটে মাটির নিচ থেকে একটি মরদেহের গোড়ালির অংশ বের হয়ে থাকতে দেখা যাওয়ার পর স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিয়েছিলেন। বনানীর যে বাড়িতে গাওজিয়াং হুই বছর খানেক ধরে বাস করতেন, তার পেছনের খালি প্লটেই তার মরদেহটি মাটির নিচে পুতে রাখা হয়েছিলো। পুলিশ জানায়, তার নাকে-মুখে রক্ত ও গলায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। মরদেহ পাওয়ার পর প্রাথমিকভাবে ভবনের নিরাপত্তা কর্মী, তার গাড়িচালক ও গৃহকর্মীসহ পাঁচজনকে আটক করা হলেও জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদেরকে প্রথমে ছেড়ে দেয়া হয়েছিলো। অন্যান্য খবর: নাগরিকত্ব আইন: আসামে 'তিনকোনিয়া বিভাজন' রাজাকারের তালিকা: আবেদন করলে 'সংশোধন' হবে কক্সবাজারে অস্ট্রেলিয়ান তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা রাজধানী ঢাকার বনানীতে চীনের একজন নাগরিককে হত্যা করে তার মরদেহ মাটির নিচে চাপা দিয়ে রাখার ঘটনায় দু'জনকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। +text: ওরোমো জাতিগোষ্ঠীর নারীরা নিজের রক্ষাকবচ এই লাঠি এই পরিস্থিতির পিছনে রয়েছে বহু পুরনো ইতিহাস। ওরোমো নারীদের যখন বিয়ে হয় তখন তারা এই কাঠের লাঠিটা পেয়ে থ���কে বাবা-মায়ের কাছ থেকে। সিনকিউ নামের এই লাঠি কে ঐ নারী এবং তার পরিবারের রক্ষার প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। ওরোমো সংস্কৃতির বিশেষজ্ঞ, সারা ডুবে বলছিলেন "এখানকার ঐতিহ্যবাহী যে আইন আছে তাতে বলা হয়েছে, একজন বিবাহিত নারীকে অপমান, বা কোন ধরণের নির্যাতন করা যাবে না। এটা একটা অপরাধ"। বিষয়টা আসলে কেমন হয় সেটা বোঝাতে পূর্বপরিকল্পিত একটা পরিস্থিতির অবতারণা করা হয়েছে। এখানে দেখানো হচ্ছে একজন পুরুষ লাঠি হাতে একটি ঘরের মধ্যে ঢুকছে, উদ্দেশ্য তার স্ত্রীকে মারবেন তিনি। ঠিক সেই মুহূর্তে মহিলাটি তার শিশুকে কোলে নিয়ে হাতে সেই সিনকিউ নিয়ে বের হয়ে আসছেন। আর মুখে উচ্চারণ করছেন এই শব্দ। এই শব্দ করার উদ্দেশ্য যাতে করে আশেপাশের অন্যান্য নারীরাও জানতে পারে যে তার উপর নির্যাতন হয়েছে। সাথে সাথে পাড়া-প্রতিবেশীদের মধ্যে যারা নারী রয়েছেন তারা তাদের সিনকিউ নিয়ে দৌড়ে চলে আসলেন। মহিলাটা মাঝখানে বসে পরলেন। আর তাকে ঘিরে এই নারীরা ঘুরতে থাকলো- যেন তাকে রক্ষা করা হচ্ছে সব বিপদ থেকে। মেয়েদের হাতে দেয়া হয় সিনকিউ, যাতে তারা তাদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য লড়াই করতে পারে ইথিওপিয়ার ওরোমো নারীদের জন্য প্রাচীন যে গাডা ব্যবস্থা আছে তার একটি অংশ এই সিনকিউ। ওরোমো সংস্কৃতির বিশেষজ্ঞ, সারা ডুবে বলছিলেন "যখন এই গাডা সিস্টেম চালু করা হয় তখন পুরুষদেরকে বিভিন্ন অস্ত্র দেয়া হত যাতে করে তারা পশু শিকার করতে পারে এবং শত্রুর বিরুদ্ধে লড়তে পারে"। তিনি আরো বলছিলেন "মেয়েদের হাতে দেয়া হয় সিনকিউ, যাতে তারা তাদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য লড়াই করতে পারে"। এদিকে নারীদের এই শব্দ শুনে গ্রামের মুরুব্বিরা চলে আসেন একটা বিচার বসানোর জন্য। চলতে থাকে শুনানি। নারীরা বলেন "তাকে মারা মোটেই উচিত হয় নি। তার স্বামীর বিচার না করা পর্যন্ত আমরা শান্ত হব না"। শুনানির পর গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠরা তাদের রায় শোনালেন। রায় অনুযায়ী মহিলার স্বামী সবার সামনে ঐ নারীর কাছে মাফ চাইলেন। একই সাথে সবার সামনেই প্রতিজ্ঞা করলেন আর কখনো তাকে মারবেন না। রায়ে আরো বলা হল যদি সে এর ব্যতিক্রম করে তার জন্য ভবিষ্যতে তাকে কঠিন শাস্তি পেতে হবে। বিয়ের সময় মেয়ের বাবা এই সিনকিউ তৈরি করেন। আর মেয়ের মা সেটা মেয়ের হাতে তুলে দেন। বয়োজ্যেষ্ঠরা বলছেন "নারীরা কখনো এসব ক্ষেত্রে মিথ্যা বলেন না"। এই সম��প্রদায়ের একজন বয়োজ্যেষ্ঠ, জি আললাক গুই বলছেন " ঈশ্বর সব সময় তাদের পাশে থাকে যারা মিথ্যা বলেন না"। তারা এই ঐতিহ্যকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম নিয়ে যেতে চান। বিয়ের সময় মেয়ের বাবা এই সিনকিউ তৈরি করেন। আর মেয়ের মা সেটা মেয়ের হাতে তুলে দেন। গারবি তাফিসি নামে এক নারী বলছেন "এটা আমি আমার মায়ের কাছ থেকে পেয়েছি, এবং আমি নিশ্চিত করবো যাতে করে এটা আমি আমার মেয়ের কাছে আমি পৌঁছে দিতে পারি"। ওরোমো জাতিগোষ্ঠীর নারীরা নিজের রক্ষাকবচ এই লাঠি হাতে নিয়ে চক্রাকারে ঘুরছে আর নিজেদের ভাষায় গান গাইছে। মুখ দিয়ে বিচিত্র এক শব্দ করছে। মাঝখানে একজন মহিলা বসে আছেন। +text: হাম্পব্যাক জাতের এই তিমি প্রতি বছর প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত পরিভ্রমণ করে থাকে সমুদ্রে আহত ও বিপন্ন প্রাণী উদ্ধারকারী একটি সংগঠন বলছে, তিমিটি হয়ত ১৩ শত কিলোমিটার দূরে তাসমানিয়ায় জালে আটকা পড়েছিল। মারার যাবার পর তিমি মাছটির আকৃতির কারণে এটিকে সৈকতেই কবর দেয়া হয়। কিন্তু বিপত্তি বাধে, তিমিটির লাশ অন্য কোথাও সরিয়ে নিতে হবে—এই দাবী নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা হঠাৎই বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের আশংকা তিমির এই কবরের কারণে বছরের পর বছর ধরে ঐ সৈকতে হাঙ্গর হানা দেবে। নিউ সাউথ ওয়েলসের নোবি সৈকতে চলছে কবর খনণের কাজ তাতে বিপন্ন হবে সমুদ্রের তীর ঘিরে স্থানীয়দের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড। তবে, কর্তৃপক্ষ এ আশংকা উড়িয়ে দিয়েছে, তাদের বক্তব্য এমন আশংকার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও যেহেতু অনেক মানুষ এর বিপক্ষে, সে কারণে কর্তৃপক্ষ তিমিটিকে সরিয়ে নেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নোবি সৈকত সংলগ্ন তিন হাজারের বেশি বাসিন্দার দায়ের করা এক পিটিশনের প্রেক্ষাপটে শেষ পর্যন্ত সোমবার কর্তৃপক্ষ তিমিটির লাশ কবর থেকে উত্তোলন করতে বাধ্য হয়েছে। পুরাকীর্তি স্থাপনায় মাটি খোঁড়ার কাজে যেসব বিশাল যন্ত্র ব্যবহার করা হয়, তেমন যন্ত্র কাজে লাগানো হয়েছে এক্ষেত্রে। আরো পড়ুন: হিলারির পথে হাঁটছেন ট্রাম্পকন্যা ইভাঙ্কা? রোহিঙ্গা ইস্যুতে আসিয়ান জোটে মালয়েশিয়ার বিদ্রোহ বিশাল তিমিটিকে কয়েক টুকরো করে কেটে সরিয়ে নেয়া হয়েছে তার মরদেহ। আর এ কাজে খরচ হয়েছে ৪০ হাজার মার্কিন ডলার অর্থাৎ টাকার অংকে ৩২ লক্ষ টাকা। তিমিটি ছিল হাম্পব্যাক জাতের। এই জাতের তিমি প্রতি বছর এন্টার্কটিকা ��েকে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত পরিভ্রমণ করে থাকে। অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্র সৈকতে কবর দেয়া ৪০ ফুট দীর্ঘ একটি তিমিকে কবর থেকে তোলা হয়েছে। গত সপ্তাহে নিউ সাউথ ওয়েলসে জেলেদের জালে আটকে আহত অবস্থায় ধরা পড়ে তিমিটি। +text: ফাহিম সালেহ অল্প বয়সেই সুপরিচিত হয়ে উঠেছিলেন উদ্যোক্তা জগতে হত্যার অভিযোগে ২১ বছর বয়সী টাইরেস হাসপিলকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যিনি ফাহিম সালেহ'র সহকারী ছিলেন বলে বিশ্বাস পুলিশের। শুক্রবার মি. হাসপিল গ্রেফতার হওয়ার পর নিউ ইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান রডনি হ্যারিসন সাংবাদিকদের বলেন, "অভিযুক্ত ব্যক্তি ভুক্তভোগীর (ফাহিম সালেহ) আর্থিক ও ব্যক্তিগত বিষয়গুলোর তত্বাবধানের দায়িত্বে ছিলেন।" "ধারণা করা হচ্ছে অভিযুক্তের কাছে ভুক্তিভোগী বড় অঙ্কের অর্থ পেতেন।" টাইরেস হাসপিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় যে তিনি ফাহিম সালেহকে বৈদ্যুতিক টেজার গান - যার সাহায্যে মানুষকে সাময়িকভাবে নিশ্চল করা যায় - দিয়ে আঘাত করার পর নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেন। মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে ৩৩ বছর বয়সী ফাহিম সালেহ'র খণ্ড-বিখণ্ড মরদেহ পাওয়া যায়। ঐ অ্যাপার্টমেন্টটি ফাহিম সালেহ'র মালিকানাধীন ছিল। এই ভবনে বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয় করেছিলেন ফাহিম সালেহ। হত্যা সম্পর্কে যা বলছে মার্কিন সংবাদ মাধ্যমগুলো নিউ ইয়র্কের পুলিশ টাইরেস হাসপিলকে গ্রেফতার করার পর ফাহিম সালেহ হত্যা সম্পর্কে খুঁটিনাটি কিছু তথ্য প্রকাশিত হয়। পুলিশ প্রথমে ধারণা প্রকাশ করেছিল যে পেশাদার খুনিরা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত। কিন্তু নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকা বলছে যে তদন্তকারীদের কয়েকজনের সন্দেহ, মি. হাসপিল গোয়েন্দাদের দিকভ্রান্ত করতে এরকম একটি ধারণা দিতে চাইছিলেন যে এই হত্যাকাণ্ডটি পেশাদার খুনিদের দ্বারা সংঘটিত হয়েছে। মঙ্গলবার ফাহিম সালেহ'র বোন ম্যানহাটনের অ্যাপার্টমেন্টে গিয়ে প্রথম মরদেহ দেখতে পান। এরপর প্রাথমিক তদন্ত শেষে ধারণা করা হয় যে তাকে সোমবারই হত্যা করা হয়। নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগের গোয়েন্দা প্রধান রডনি হ্যারিসনকে উদ্ধৃত করে মার্কিন সংবাদ সংস্থা সিএনএন জানায়, সোমবার দুপুরে সালেহকে হত্যা করার আগে হাসপিল তাকে বৈদ্যুতিক টেজার গান দিয়ে নিশ্চল করেন। এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং নিউ ইয়র্ক পোস্টের খবর অনুযায়ী, ফাহিমকে খুন করার পর গাড়ি ভাড়া করে ম্যানহাটনের একটি দোকানে যান হাসপিল, যেখান থেকে তিনি অ্যাপার্টমেন্ট পরিষ্কার করার জিনিসপত্র কেনেন। এই সময় হাসপিল ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে গাড়ি ভাড়া দেন। পরেরদিন, অর্থাৎ মঙ্গলবার, হাসপিল ফাহিম সালেহ'র অ্যাপার্টমেন্টে যান হত্যার আলামত মুছে ফেলার উদ্দেশ্যে - বলছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। আরো পড়তে পারেন: 'টেক মিলিওনিয়ার' ফাহিম সালেহ যেভাবে নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন নিউ ইয়র্কের বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে পাঠাও প্রতিষ্ঠাতার খণ্ড-বিখণ্ড লাশ ফাহিম সালেহ'র মালিকানাধীন 'গোকাডা' সার্ভিস ডেলিভারিতে এক হাজার মোটর সাইকেল রয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানাচ্ছে, মঙ্গলবার দুপুরে ফাহিম সালেহ'র বোন যখন অ্যাপার্টমেন্টে যাচ্ছিলেন তখন হত্যাকারী মরদেহ টুকরো টুকরো করছিলেন। ফাহিম সালেহ'র বোন উপরে উঠে আসার আগে পেছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে সিঁড়ি দিয়ে নেমে যান। নিউ ইয়র্ক পোস্ট তাদের সূত্র উদ্ধৃত করে জানাচ্ছে, বাড়ি ভাড়া নেয়ার অ্যাপ এয়ারবিএনবি'র মাধ্যমে বুধবার নিউ ইয়র্কের ক্রসবি স্ট্রিটের একটি বাসায় ওঠেন হাসপিল। ঐ লেনদেনও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে সম্পন্ন করেছিলেন তিনি, যার সূত্র ধরে তদন্তকারীরা হাসপিলের খোঁজ পান। ফাহিম সালেহর ওপর ব্যবহৃত টেজারটিও হাসপিল নিজের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কেনেন বলে জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। হাসপিলের গ্রেফতারের পর থেকে তার ব্রুকলিনের অ্যাপার্টমেন্ট এবং তাকে যেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেই অ্যাপার্টমেন্টে পুলিশ তদন্ত কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে খবর প্রকাশ করেছে এনবিসি নিউ ইয়র্ক। মঙ্গলবার ফাহিম সালেহ'র লাশ পাওয়া যাওয়ার পর পুলিশকে উদ্ধৃত করে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছিল, অ্যাপার্টমেন্টের নিরাপত্তা ক্যামেরায় দেখা যায় যে কালো স্যুট এবং কালো মাস্ক পরা একজন ব্যক্তির সাথে একই লিফটে প্রবেশ করেন ফাহিম সালেহ। লিফট ফাহিম সালেহ'র অ্যাপার্টমেন্টের সামনে দাঁড়ালে দুজনেই সেখান থেকে বের হয়ে যান। এরপর ফাহিম সালেহ তার অ্যাপার্টমেন্টে প্রবেশ করেন। তখন সেই ব্যক্তি ফাহিম সালেহকে অনুসরণ করে। পুলিশ বলছে, এরপর দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয���ে যায়। নিউ ইয়র্ক টাইমস ও সিএনএনএন'এর খবর অনুযায়ী, অভিযুক্ত হাসপিল ফাহিম সালেহ'র অর্থ আত্মসাৎ করার পরও তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নিয়ে তাকে তা শোধ করার সুযোগ দিয়েছিলেন ফাহিম সালেহ। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: সাহেদ-সাবরিনা আন্তর্জাতিক সংবাদ শিরোনাম হওয়ায় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ ভোগান্তি, জালিয়াতির পর কমছে করোনাভাইরাস টেস্ট, কতটা ঝুঁকিতে বাংলাদেশ? আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার মধ্যে যুদ্ধের দামামা 'ডাক্তারকে নাম বলায় পেটালেন স্বামী' - যে দেশে মেয়েদের নাম প্রকাশ নিষেধ বাংলাদেশে রাইড শেয়ারিং সার্ভিস পাঠাও এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ'র হত্যার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে নিউ ইয়র্ক পুলিশ গ্রেফতার করেছে, যার কাছে ফাহিম সালেহ'র বড় অঙ্কের অর্থ পাওনা ছিল বলে ধারণা করছে তারা। +text: ভারতের সংসদ ভবন ভারতের পার্লামেন্ট মঙ্গলবার সে দেশের 'শত্রু সম্পত্তি আইনে' যে সংশোধনী পাস করেছে, তার সুবাদে সরকার এখন থেকে সেই সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অধিকার পাবে। এই সংশোধনী নিয়ে বিতর্কের সময় পার্লামেন্টে একাধিক বিরোধী দল অভিযোগ করেছিল এটি একটি মুসলিম-বিরোধী পদক্ষেপ, কিন্তু সরকার তা নাকচ করে দিয়েছে। ষাটের দশকে চীন ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একের পর এক যুদ্ধ লড়ার পর ভারত ১৯৬৮তে শত্রু সম্পত্তি আইন পাস করেছিল - যাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী আনা হল ৪৯ বছর বাদে। এই সংশোধনী অনুসারে, যারা তখন ভারত ছেড়ে পাকিস্তান বা চীনে চলে গিয়েছিলেন তারা মারা যাওয়ার পরও ভারতে থেকে যাওয়া তাদের ওয়ারিশরা তাদের সম্পত্তি আর কখনওই ফিরে পাবেন না - শত্রু সম্পত্তি হিসেবে সরকার তা জব্দ করতে পারবে। এই আইন প্রযোজ্য হবে তখনকার পশ্চিম ও পূর্ব পাকিস্তান, যা অধুনা বাংলাদেশ এবং চীনে পাড়ি দেওয়া ব্যক্তিদের সবার জন্যই। মুম্বাইয়ে হাজি আলী দরগায় হাজির মুসলমানরা পার্লামেন্টে বিলটি পাস করানোর সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং দাবি করেন, এই বিলটিকে জাতি বা ধর্মের দৃষ্টিকোণে দেখা কখনওই উচিত হবে না। কারণ শুধু পাকিস্তানে চলে যাওয়া লোকেরাই নন, অনেক চীনা নাগরিক ও তাদের সম্পত্তিও এর আওতায় এসেছে। তিনি বলেন, "মনে রাখতে হবে, যাদেরকে আমরা শত্রু বলে গণ্য করেছি তাদের মৃত্যুর পর তাদের মালিকানাধীন সম্পত্তির রং বদলে যেতে পারে না, তখনও সেটা শত্রু সম্পত্তিই থাকে।" তবে পার্লামেন্টে বামপন্থী দল আরএসপি-র এনকে প্রেমাচন্দ্রন দাবি করেন, এই পদক্ষেপ মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল। কংগ্রেস নেতা শশী থারুর আরও স্পষ্ট করে বলেন, এই বিল ভারতের মুসলিমদেরই বেশি ক্ষতি করবে। মি. থারুরের কথায়, "সোজা কথা সোজা বলাই ভাল - এই বিল ভারতের লক্ষ লক্ষ নাগরিকের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে, আর তারা সবাই মুসলিম। চীনাদের সম্পত্তির পরিমাণ এখানে খুবই কম। পাকিস্তানে যে শুধু একটি সম্প্রদায়ের লোকই গিয়েছিলেন তা আমরা সবাই জানি। ফলে এখন এই পদক্ষেপ আমার মতে প্রায় অসাংবিধানিকই শুধু নয় - স্বাভাবিক ন্যায়েরও পরিপন্থী।" সরকার অবশ্য এই যুক্তি মানছে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তারা পাকিস্তানের নেয়া পদক্ষেপের পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছেন মাত্র এবং তা কীভাবে স্বাভাবিক ন্যায়ের বিরোধী সেটাই তার মাথায় ঢুকছে না। রাজনাথ সিংয়ের পাল্টা যুক্তি: "পাকিস্তান তো আমাদের ভারতীয় নাগরিকদের সম্পত্তি জব্দ করে রেখেছে। তা তো তারা ওয়ারিশদের কখনও ফিরিয়ে দেয়নি। ফলে আমার মতে ন্যায় সেটাই হবে যখন আমরাও তাদের সম্পত্তি তাদের উত্তরাধিকারীদের হাতে তুলে দেব না।" রাজনাথ সিং, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই বিলে সম্ভবত সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন মেহমুদাবাদের রাজার উত্তরাধিকারী আমির মোহামেদ খান, যিনি উত্তরপ্রদেশে প্রায় ৯০০ সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা লড়ছেন। অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর ও তার ছেলেমেয়েরাও এই আইনের জেরে কিছু সম্পত্তি খোয়াতে পারেন, কারণ শর্মিলার প্রয়াত স্বামী মনসুর আলি খান পতৌদির এক আত্মীয় বেশ কয়েক দশক আগে পাকিস্তানে গিয়ে বসত করেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস পার্লামেন্টে বিলটিকে সমর্থন করে, আর তাদের তরফে সভায় বলেন সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বিবিসিকে বলেন, "বিলটি আমরা সমর্থন করেছি কারণ আগের তুলনায় সেটি ভাল হয়েছে। এখন হাইকোর্টে আবেদন করারও সুযোগ রাখা হয়েছে। তা ছাড়া পশ্চিমবঙ্গে এর তেমন প্রভাব হবে না, কারণ কলকাতাসহ রাজ্যে এই জাতীয় যত বিতর্কিত সম্পত্তি ছিল, সেই সব বিবাদ অনেক আগেই নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। আমাদের রাজ্যে এটা কোনও বড় জ্বলন্ত সমস্যা নয়।" তৃণমূল এমপি-র দাবি সত্যি হলে ধরে নেওয়া যায়, এখনকার পশ্চিমবঙ্গ থেকে যারা সে আমলের পূর্ব পাকিস্তানে পাড়ি দিয়েছিলেন তাদের ফেলে যাওয়া সম্পত্তি নিয়ে সে রাজ্যে তেমন আর কোনও বিরোধ নেই। তাদের উত্তরাধিকারীরা হয় ক্ষতিপূরণ পেয়ে গেছেন কিংবা সরকারের বিরুদ্ধে মামলাও তুলে নিয়েছেন। সাতচল্লিশের দেশভাগের সময় বা পরবর্তীকালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় যারা ভারত ছেড়ে তখনকার পূর্ব বা পশ্চিম পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলেন ভারতে থেকে যাওয়া তাদের বৈধ উত্তরাধিকারীদেরও তাদের রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে আর কোনও অধিকার থাকবে না। +text: ইসরায়েলী হামলায় বিধ্স্ত বাড়িঘর। ইসরায়েল বলছে, তাদেরকে লক্ষ্য করে ফিলিস্তিনি জঙ্গিদের শত শত রকেট ছোঁড়ার প্রেক্ষিতেই তিনি এই নির্দেশ দিয়েছেন। মি. নেতানিয়াহু আরো বলেছেন যে তিনি গাজার চারপাশে ট্যাঙ্কসহ গোলন্দাজ বাহিনী মোতায়েনেরও আদেশ দিয়েছেন। গাজায় কর্মকর্তারা বলছেন, শুক্রবারের পর থেকে ইসরায়েলী হামলায় আটজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আর ইসরায়েল বলছে, ফিলিস্তিনি জঙ্গিদের হামলায় তিনজন ইসরায়েলী নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিনি সূত্র থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে নিহতদের একজন হামাসের কমান্ডার হামেদ আহমেদ আবেদ খুদরি। ইসরায়েল দাবি করছে, জঙ্গিদের জন্যে ইরান থেকে অর্থ সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন তিনি এবং তাকে পরিকল্পনা করেই হত্যা করা হয়েছে। বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, গত পাঁচ বছরের মধ্যে এই প্রথম এতো বড়ো ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। বলা হচ্ছে, গত দুদিনে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে গাজা থেকে সাড়ে চারশো রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। আর ইসরায়েল গাজায় দুশোরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। ফিলিস্তিনি জঙ্গিদের রকেট হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ইসরায়েলী বাড়িঘর। আরো পড়তে পারেন: ঘূর্ণিঝড় ফণী: পূর্বাভাস প্রদানে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ভূমিকা ছিল কি? ছুরি, তলোয়ার থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশ শ্রীলঙ্কায় 'জয় শ্রীরাম' শুনে গাড়ি থেকে নেমে ধাওয়া মুখ্যমন্ত্রীর গত মাসেই মিশরের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির সমঝোতা হয়েছে। কিন্তু হামাস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শর্তভঙ্গের অভিযোগ করেছে। শনিবার সারা রাত ধরে গাজা এলাকায় ঘন ঘন বিস্ফোরণ, সাইরেন এবং রকেট নিক্ষেপের শব্দ শোনা যায়। গাজায় ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে একজন গর্ভবতী মহিলা এবং তার শিশু সন্তান রয়েছে। তবে ইসরায়েলী কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, তাদের ভাষায় 'সন্ত্রাসী কার্যকলা���ের কারণেই' মহিলা ও শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে । তারা বলছে, গাজা থেকে অন্তত ৪৩০টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে, আর এর আঘাতে আশকেলন শহরে একজন ইসরায়েলি বৃদ্ধ নিহত হয়। রাতভর ইসরায়েলী বিমান বাহিনী গাজায় হামাস ও ইসলামিক জিহাদের সাথে সংশ্লিষ্ট দুই শতাধিক লক্ষ্যবস্তুর ওপর হামলা চালায়। বলা হচ্ছে, দুই পক্ষের মধ্যে এটি সাম্প্রতিক কালের সবচাইতে গুরুতর সহিংসতার ঘটনা। ফিলিস্তিনিরা গাজার সীমান্তে ইসরায়েলি অবরোধের অবসান দাবি করছিল - যার শর্ত হিসেবে ইসরায়েল রকেট নিক্ষেপ বন্ধ করার কথা বলছিল। এই সংঘাতের মধ্যেই একটা যুদ্ধবিরতির চেষ্টা চলছে। জাতিসংঘ উভয় পক্ষকে উত্তেজনা হ্রাস এবং গত কয়েক মাস আগেকার সমঝোতা বলবৎ রাখার আহবান জানিয়েছে। ইসরায়েলী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার সামরিক বাহিনীকে গাজা ভূখণ্ডে হামলা অব্যাহত রাখার আদেশ দিয়েছেন। +text: বাহিনীটির নিজস্ব আইনে চারহাজারের বেশি জওয়ানের সাজা হয়েছে, বাংলাদেশের ফৌজদারি আইনে বিচার হয়েছে ৮০০জনের বেশি জওয়ানের। যে ১৩জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়নি, তাদের মধ্যে চারজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে আটজনকে। বাকি একজন আগেই মারা গেছে। বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন পাওয়া ১৬০ জনের মধ্যে ১৪৬ জনের একই সাজা বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। অন্যদিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রাপ্ত ৩১ জনের সাজা বাড়িয়ে যাবজ্জীবন করা হয়েছে। এখন সব মিলিয়ে যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামীর সংখ্যা দাড়াচ্ছে ১৮৫ জনে। আরো পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের পাশে থাকবে ব্রিটেন 'আমার বাবা আমাকে নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো' তিনজন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিক হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে। দু'দিন ধরে হাইকোর্টের দেয়া এই রায়ে বেশ কিছু পর্যবেক্ষণও এসেছে। সেখানে তৎকালীন গোয়েন্দাদের ব্যর্থতার কথাও বলা হয়েছে। ২০০৯ সালের ২৫ এবং ২৬শে ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর-এর সদর দপ্তর পিলখানায় জোয়ানদের বিদ্রোহে ৫৪জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪জনকে হত্যা করা হয়। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ২০১৩ সালে হত্যা মামলাটিতে ৮৫০জন আসামির মধ্যে ১৫২ জনের ফাঁসির রায় দেয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম এত বেশি সংখ্যক আসামির সাজা হাইকোর্টে অনুমোদন হল। বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সদরদপ্তরে বিদ্রোহে হত্যার দায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। বিচারিক আদালত ১৫২ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। +text: নিহতের সংখ্যা বেড়ে এখন ৩৫৯ কয়েকটি গির্জা ও বিলাসবহুল হোটেলে পরিচালিত ওই হামলায় ৩৫৯ জন নিহত ও পাঁচশর বেশি আহত হয়েছে। চলতি মাসের শুরুতেই ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এ বিষয়ে সতর্ক করেছিলো কিন্তু সেটি শ্রীলংকা সরকারের প্রশাসনে সব জায়গায় জানানো হয়নি বলে দেশটির পার্লামেন্টেই জানানো হয়েছে। প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা দেশটির প্রতিরক্ষা সচিব ও পুলিশ প্রধানকে সরিয়ে দেয়ার পদক্ষেপ নিয়েছেন। রোববারের ওই হামলায় যে নয়জন অংশ নিয়েছিলো তাদের মধ্যে আটজনই শ্রীলংকার নাগরিক। এ ঘটনায় পুলিশ এখনো জাহরান হাশিম নামে স্থানীয় একটি ইসলামপন্থী জঙ্গি নেতাকে খুঁজছে। অধিকাংশ হামলাকারী 'উচ্চ-শিক্ষিত, ধনী ঘরের সন্তান' শ্রীলংকায় সামাজিক মাধ্যম কেন বন্ধ করা হলো? আগাম সতর্কবার্তা নিয়ে তালগোল শ্রীলংকায়? দেশজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে সরকারের মধ্যে সমস্যা কিভাবে প্রকাশ হলো প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুয়ান ভিযেওয়ার্দেনে বলেছেন, "আমাদের দায়িত্ব নিতেই হবে কারণ যে সতর্কবার্তা পাওয়া গিয়েছিলো তা সঠিকভাবে যথাযথ ব্যক্তিদের জানালে এ ঘটনা এড়ানো যেতো বা কমপক্ষে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা যেতো"। শ্রীলংকা সংসদের নেতা লক্ষ্মণ কিরয়েলা বলেছেন সিনিয়র কর্মকর্তারা ইচ্ছাকৃত ভাবেই সম্ভাব্য হামলার বিষয়টির গোয়েন্দা তথ্য ঝুলিয়ে রেখেছিলো। তিনি বলেন, "কিছু শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা ইচ্ছাকৃত ভাবে তথ্য গোপন করেছেন"। তিনি বলেন ভারতীয়দের কাছ থেকে তথ্য এসেছে ৪ঠা এপ্রিল কিন্তু রয়টার্স বলছে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে সে খবর জানানো হয়নি। হামলাকারীদের সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে যুক্তরাজ্য সরকার নিশ্চিত করেছে যে একজন আত্মঘাতী বোমারু এর আগে যুক্তরাজ্য গিয়েছিলো এবং তার নাম আব্দুল লতিফ জামিল মোহাম্মেদ। তিনি পড়াশোনার জন্য যুক্তরাজ্য গিয়েছিলেন যদিও সেটি তিনি শেষ করেননি। পরে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় পোস্ট গ্রাজুয়েশন করেছিলেন বলে জানিয়েছেন শ্রীলংকার উপ প্রতিরক্ষামন্ত্রী। মিস্টার ভিযেওয়ার্দেনে বলেন তারা সচ্ছল পরিবারের সন্তান। হামলাকারীদের মধ্যে দু ভাই আছেন যাদের পরিবার শ্রীলংকার বিত্তবান হিসেবে পরিচিত। ভয়াবহ হামলার শিকার এই গির্জা নিরাপত্তা বাহিনী যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে এ পর্যন্ত ৬০ জনকে আটক করেছে নিরাপত্তা বাহিনী এবং আরও হামলার সম্ভাবনা ঠেকাতে জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে। উপ প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও হামলার সম্ভাবনার বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করেছেন। এর মধ্যে হামলার শিকার হওয়া কিংসবাড়ি হোটেল খুলে দেয়া হয়েছে। দেশজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে এবং সন্দেহভাজনদের খুঁজছে পুলিশ। শ্রীলংকা সরকার ইস্টার সানডের হামলার 'বড় ধরণের গোয়েন্দা ব্যর্থতা'র বিষয়টি স্বীকার করেছে। +text: ডিমেনশিয়া এক ধরনের নিউরজিক্যাল রোগ যা মস্তিস্কের কর্মক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলে। ডিমেনশিয়া মস্তিষ্কের এক ধরনের রোগ যার ফলে কিছু মনে রাখতে না পারেন না রোগী। এমনকি এ রোগটির কারণে একটু আগেই করা কাজ ভুলে যায় অনেকে। রোগটি নিয়ে আজ ঢাকায় একটি সেমিনারের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ আলঝেইমার সোসাইটি। ডিমেনশিয়ার একটি বড় কারণ হলো আলঝেইমার্স । সোসাইটির একজন সদস্য এবং সাবেক এমপি সেলিনা জাহান লিটা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, তারা অনেকদিন ধরেই বাংলাদেশে রোগটি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করছেন। কিন্তু রোগটি সরকারি বা বেসরকারি কোন দিক থেকেই যথাযথ গুরুত্ব এখনো পায়নি। এক হিসেবে দেখা যায়, বাংলাদেশে ২০১৫ সালে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিলো পাঁচ লাখ যা আগামী ২০৩০ সালে বেড়ে নয় লাখ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আলঝেইমার সোসাইটির হিসেবে, ২০৫০ সাল নাগাদ এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২২ লাখ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। "অর্থাৎ দিন দিন রোগের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। সে হিসেবে প্রতিকারের ব্যবস্থা খুব কমই," বলছিলেন সেলিনা জাহান। "মানুষকে সচেতন করা দরকার। তাহলে আক্রান্ত হলেও মানুষ বৃদ্ধ বয়সে করুণ পরিণতির মুখোমুখি হবেনা।" ফেসবুকে নারীদের মত প্রকাশ কতটা নিরাপদ? ভয়ে দেশে ফিরছেন না ইরানের একজন নারী বক্সার বাংলাদেশের পাট নিয়ে ভারত কিভাবে লাভ করছে? ভারতের একটি হাসপাতালে ডিমেনশিয়া আক্রান্ত রোগীরা। বাংলাদেশেও বাড়ছে এই রোগের প্রকোপ। (ফাইল ফটো) কোন বয়সের মানুষ বেশি আক্রান্ত হয়? সেলিনা জাহান লিটা বলছেন, বাংলাদেশে ষাট বছরের বেশি বয়সের বয়সের মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আবার কিছু ক্ষেত্রে ৪০-৫০ বছরে বয়সের মধ্যেও অনেককে আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নিম্নবিত্তের পাশাপাশি উচ্চবিত্তের মানুষেরাও রোগটিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। "বাংলাদেশে বিশেষ করে যারা দারিদ্রসীমার নীচে আছেন তাদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।" "উচ্চবিত্ত অনেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন কিন্তু মূলত রোগটির ক্ষেত্রে বেশি দরকার সচেতনতা।" চিকিৎসা আছে পর্যাপ্ত? সেলিনা জাহান বলছেন, ডিমেনশিয়া নিয়ে সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনা। "রোগটির তেমন চিকিৎসা নেই। কিন্তু শুধু চিকিৎসার বিষয় নয়, রোগটি নিয়ে সচেতনতা তৈরি হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।" "এটি হলে রোগটিকে আমরা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবো। বৃদ্ধ বয়সের করুণ পরিণতি থেকে রক্ষা করতে পারবো।" তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোতে ডিমেনশিয়া কর্নার তৈরি করার দরকার। পাশাপাশি ডাক্তার ও নার্সদের তাদের করণীয় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা উচিত। "মনে রাখতে হবে পারিবারিকভাবে সচেতনতা তৈরি হলে রোগীরা জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে করুণ পরিণতি থেকে কিছুটা হলেও রেহাই পাবেন।" বাংলাদেশসহ বিশ্ব জুড়েই ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ রোগের ভয়াবহতা দিনে দিনে বাড়ছে। +text: লন্ডনে শেখ মুজিবুর রহমান, জানুয়ারি ১৯৭২ মুম্বাইয়ের এই বর্ষীয়ান পরিচালকই ছবিটি তৈরির দায়িত্ব পেয়েছেন। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন শেখ মুজিবের চরিত্রে বাংলাদেশের কোনও অভিনেতাকেই তিনি নিতে চান। বঙ্গবন্ধুর নামের সঙ্গে বাংলাদেশে যে আবেগ জড়িত, একজন বিদেশি পরিচালক তার প্রতি সুবিচার করতে পারবেন না বলেও ঢাকাতে কেউ কেউ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন - কিন্তু শ্যাম বেনেগাল পরিষ্কার জানাচ্ছেন তিনি এই ধরনের সমালোচনা নিয়ে আদৌ ভাবিত নন। ২০২০ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষের প্রাক্কালে তার জীবন নিয়ে যে চলচ্চিত্র বা বায়োপিক তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে, সেটির পরিচালক হিসেবে বাংলাদেশ সরকার মুম্বাইয়ের শ্যাম বেনেগালকে বেছে নিয়েছে প্রায় মাসদেড়েক আগেই। বলিউডের ৮৩ বছরের এই প্রবীণ পরিচালক অবশ্য তার অনেক আগে থেকেই শেখ মুজিবকে নিয়ে গবেষণা ও পড়াশুনো শুরু করে দিয়েছিলেন, মুজিবের আত্মজীবনীও তিনি এর মধ্যে পড়ে ফেলেছেন। এ মাসের গোড়ায় মুম্বাইয়ের তারদেওতে নিজের স্টুডিওতে বসে মি বেনেগাল বিবিসিকে বলছিলেন, ছবিটি বানানোর জন্য তিনি এখন পুরোপুরি প্রস্তুত - এবং ছবির নামভূমিকায় কে অভিনয় করবেন তা নিয়েও তিনি ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছেন। পরিচালক শ্যাম বেনেগাল তার কথায়, "ব্যক্তিগতভাবে আমি চাইব বাংলাদেশ থেকেই কোনও অভিনেতা এই চরিত্রে অভিনয় করুন - কারণ সেটাই বেশি সমীচীন হবে। আর তিনি একটু রোগা হলেই ভাল - কারণ জীবনের বেশিটা অংশ শেখ মুজিব নিজেও কিন্তু বেশ সরু আর রোগা ছিলেন।" "খুব কম লোকই এটা খেয়াল করেন যে শেখ মুজিবের যে বিশাল, ভারিক্কি চেহারার ছবিগুলোর সঙ্গে আমরা বেশি পরিচিত - সেটা তার জীবনের পরের দিকটার। শেষের দিকে তার কিছুটা ওজন বেড়েছিল ঠিকই, কিন্তু জীবনের বেশিটা সময় তিনি রীতিমতো রোগাই ছিলেন - যেমনটা টিপিক্যাল বাঙালি বুদ্ধিজীবী ও অ্যক্টিভিস্টরা হন আর কী!" শেখ মুজিবের চরিত্রে বাংলাদেশী অভিনেতা খোঁজার আর একটা কারণ মূল ছবিটা হবে বাংলাতেই - আর পরিচালক চান মূল অভিনেতার নিজের কন্ঠস্বরই সেখানে ব্যবহার করতে। ফলে চেহারা একটু রোগা হলেও মুজিবের জলদগম্ভীর কন্ঠস্বর বা ব্যারিটোন ভয়েসটাও থাকতে হবে - আর অভিনেতা নির্বাচনে সেটাই প্রধান চাবিকাঠি। শ্যাম বেনেগাল অবশ্য নিশ্চিত এই ধরনের উপযুক্ত অভিনেতা খুঁজে পেতে বড় একটা সমস্যা হবে না - আর পরে ছবিটা ডাব করা হবে হিন্দি, উর্দু বা ইংরেজিতেও। রাশিয়া সফরে শেখ মুজিবুর রহমান (ডাইনে)। ১৯৭২ বাংলাদেশের জাতির পিতাকে নিয়ে ছবি বানানোর দায়িত্ব কেন একজন বিদেশি পরিচালক পাবেন বলে বাংলাদেশে কেউ কেউ যে প্রশ্ন তুলছেন, সে ব্যপারে তার বক্তব্য কী? প্রসঙ্গে শ্যাম বেনেগাল বলেন, "দেখুন, এই প্রশ্নটার উত্তর দেওয়া আমার পক্ষে সত্যিই কঠিন। কিন্তু হাতের কাছেই তো উদাহরণ আছে - ভারতের মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে কী অসাধারণ ছবিই না বানিয়েছিলেন রিচার্ড অ্যাটেনবরো! আর সেই অর্থে বাংলাদেশের কাছে তো আমি সেরকম কোনও বিদেশিই নই!" "প্রশ্নটা হল কাজটা ভালভাবে করার যোগ্যতা আপনার আছে কি না, এবং এ ক্ষেত্রে জাতির পিতাকে বাংলাদেশ যে দৃষ্টিতে দেখে সেই মর্যাদার দাম আপনি দিতে পারছেন কি না! ভারতীয় না-হয়েও অ্যাটেনবরোর তো গান্ধীকে বুঝতে কোনও সমস্যা হয়নি!" "কাজেই আমার কাছে অন্তত এই প্রশ্নটার কোনও প্রাসঙ্গিকতা নেই, তবে মানুষ অন্যভাবে ভাবতেই পারেন - সেটা তাদের ওপর!", বলেন মি বেনেগাল। মন্থন, অঙ্কুর, নিশান্তের মতো বিখ্যাত সব ছবির নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল ভারতে টেলিভিশনের জন্যও 'ভারত এক খোঁজ' কিংবা ভারতীয় রেলকে নিয়ে 'যাত্রা'র মতো নানা এপিকধর্মী কাজ করেছেন। জীবনীধর্মী ছবি বা তথ্যচিত্র বানিয়েছেন গান্ধী, নেহরু বা সুভাষ বোসকে নিয়েও। কিন্তু শেখ মুজিবের বায়োপিক বিতর্কমুক্ত রাখতে পারাটা যে বিরাট এক চ্যালেঞ্জ - কাজ শুরু করার আগে সে কথা স্বীকার করতেও তার বিন্দুমাত্র দ্বিধা নেই! বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ প্রযোজনায় শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীনির্ভর যে সিনেমাটি নির্মিত হতে চলেছে, তার প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের জন্য 'সরু ও রোগা চেহারার একজন বঙ্গবন্ধু'কে খুঁজছেন পরিচালক শ্যাম বেনেগাল। +text: পেঁয়াজের আকাল: ঢাকার রাস্তায় ক্রেতাদের ভীড়। ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ওপর দিল্লিতে এক সভায় কিছুটা রসিকতার সুরেই তিনি বলেছিলেন, "হঠাৎ করে আপনারা বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে আমরা একটু সমস্যায় পড়েছি। আমি রাঁধুনিকে বলে দিয়েছি পেঁয়াজ ছাড়া রান্না করতে।" তারপর থেকেই পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। কেজি-প্রতি ২০০ টাকা হওয়ার পর অনেক পরিবারই পেঁয়াজের ব্যবহার অনেক কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে: পেঁয়াজ যদি চাল-ডালের মতো অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য না হয়, তাহলে পেঁয়াজ বাদ দিয়ে কি প্রতিদিনের রান্নাবান্না চলে না? ইউটিউবে খুবই জনপ্রিয় একটি রান্নার চ্যানেল পরিচালনা করেন রুমানা আজাদ। তিনি বলছিলেন, পেঁয়াজ ছাড়া রান্নার কথা বাঙালিরা চিন্তাও করতে পারেন না। "মা-খালাদের রান্না দেখে দেখে আমাদের মনে একটা বদ্ধমূল ধারণা তৈরি হয়েছে যে পেঁয়াজ ছাড়া কোন তরকারি রান্না সম্ভব না। বিশেষভাবে মাংস ও মাছ রান্নায়" বলছিলেন তিনি, "আদা, রসুন হয়তো বাদ দেয়া চলে, কিন্তু পেঁয়াজ থাকতেই হবে।" পেঁয়াজের প্রতি গৃহিণী আর রসনা-বিলাসীদের এত পক্ষপাতিত্বের কারণ তার বিশেষ স্বাদ এবং গ্রেভি বা ঝোল তৈরিতে পেঁয়াজের বিশেষত্ব। রুমানা আজাদ, জনপ্রিয় ইউটিউবার। কাঁচা মাংস কিংবা মাছের মধ্যে পেঁয়াজের রস ঢুকে তার স্বাদকে আরও বাড়িয়ে দেয় বলেই পেঁয়াজের এত কদর, বলছিলেন রুমানা আজাদ। সব দোষ পেঁয়াজের? কিন্তু তিনি জানান, বাঙালী রান্নায় বিশেষভাবে মাংসের ডিশ তৈরি করতে গিয়ে এতটাই কষানো হয় যে পেঁয়াজের দ্রব্যগুণ বলে আর কিছু থাকে না। পুষ্টিবিজ্ঞানীরা বলছেন, বাঙালী রান্নায় সাধারণত যে উচ্চ তাপমাত্রা ব্যবহার করা হয় তাতে পেঁয়াজের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে পেঁয়াজের বেশি বেশি ব্যবহার স্বাদের ক্ষেত্রে বিশেষ কোন তারতম্য ঘটাতে পা��ে না বলে তারা উল্লেখ করছেন। রুমানা আজাদ বলছেন, অথচ বাঙালিদেরই একটা বড় অংশের রান্না ঘরে পেঁয়াজ ঢোকা নিষেধ। "আমি আমার ইউটিউব চ্যানেলের জন্য বেশ কিছু ডিশ তৈরি করেছি কোন রকম পেঁয়াজ ব্যবহার না করে," তিনি বলছেন, "কিন্তু সেই ডিশের স্বাদ কোন অংশেই কম ন।" বালতি গোশত - মাংসের এই ডিশটি কোন পেঁয়াজ ব্যবহার না করেই তৈরি করা হয়েছে। সম্পর্কিত খবর: পেঁয়াজের দাম কী কারণে দু’শ টাকা ছাড়াল পেঁয়াজ যেভাবে ভারতের রাজনীতিবিদদের কাঁদাচ্ছে পেঁয়াজ নিয়ে চমকপ্রদ ৯ টি তথ্য পেঁয়াজের ধুসর ইতিহাস বাঙালির পেঁয়াজ-প্রীতির কারণ যেমন ব্যাখ্যাতীত, তেমনি পেঁয়াজের ইতিহাসও কুয়াশার চাদরে ঢাকা। উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে ইরান, পশ্চিম কিংবা মধ্য এশিয়াকে পেঁয়াজের উৎপত্তিস্থল বলে দাবি করা হয়। তবে এর ব্যবহার যে প্রাচীন তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। খৃষ্টের জন্মের ৫০০০ বছর আগে চীনে এর ব্যবহার ছিল। প্রাচীন মিশরেও রাজার দেহ মমি করার আগে চোখের কোটরে পেঁয়াজের বিচি ঢুকিয়ে দেয়া হতো বলে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। তবে পেঁয়াজের উপকরিতা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। ভেষজ-শাস্ত্রে পেঁয়াজের গুণগান করা হয়েছে। এটি যৌন-ক্ষমতা এবং কাম-বৃদ্ধি করতে পারে বলে এর নানা রকমের ওষুধি ব্যবহার রয়েছে। একই কারণে দেহ শীতল রাখার স্বার্থে হিন্দু বিধবাদের জন্য পেঁয়াজ রসুন পরিহার করার উপদেশ দেয়া হয়েছে। আইনুন নাহার, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। "রান্নায় পেঁয়াজের ব্যবহার নেই, বাঙালি একথা ভাবতেই পারে না। এটা আমাদের খাদ্য-সংস্কৃতির একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ," বলছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আইনুন নাহার। তিনি ব্যাখ্যা করছেন, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ব্যবহারের ফলে বিশেষ গোলাকৃতি এই সবজিটি বাঙালির রান্না একটি বাধ্যতামূলক উপাদানে পরিণত হয়েছে। "দেখবেন, তরকারিতে পেঁয়াজ ব্যবহার করা হয়নি, এটা বলে না দিলে আপনি সহজে টের পাবেন না," অধ্যাপক নাহার বলেন, "আবার যে মুহূর্তে আপনি জানতে পারবেন রান্নায় পেঁয়াজ ব্যবহার করা হয়নি, তখন আর তরকারিটি আগের মতো মজা লাগবে না।" পেঁয়াজের অনাগত ভবিষ্যৎ কিন্তু পেঁয়াজের আন্তর্জাতিক বাজারের টালমাটাল অবস্থার ফলে কি বাঙালির খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ঘটতে পারে? কিংবা পেঁয়াজের ব্যবহার কমে আসতে পারে? রুমানা আজাদ মনে ক��েন, বাঙালিরা ঐতিহ্যগতভাবে যেসব রান্না জানে, তাতে বড় কোন ধরনের পরিবর্তন মেনে নিতে চায় না। বাঙালির রসুইখানায় পেঁয়াজের সগৌরব অবস্থান কতদিন থাকবে তা বলা মুশকিল। মাংসের ডিশে থকথকে গ্রেভি তৈরির জন্য পেঁয়াজের বদলে আলুর পেস্ট, কালো জিরা, পাঁচ ফোড়ন, সরষে বাটা কিংবা পোস্ত বাটার ব্যবহারে আগ্রহী হবে এমন লোকের সংখ্যা কমই, বলছেন তিনি। "পরিবর্তন যদি ঘটেও সেটা এক প্রজন্মের ব্যাপার হবে না। পরিবর্তনটা হয়তো ঘটবে খুবই ধীরে। কয়েক জেনারেশন ধরে এটা ঘটতে পারে," বলছেন অধ্যাপক আইনুন নাহার। "পেঁয়াজের দাম আগেও বেড়েছে। আমার মাকে দেখেছি তখন রান্নায় পেঁয়াজ ব্যবহার করতেন কম। কিন্তু একেবারে বন্ধ করে দেননি কখনই।" আর সে কারণেই বোধহয় বাঙালির রসুইখানায় পেঁয়াজের দাপট টিকে থাকবে দীর্ঘদিন। বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: '২৬০ ভুয়া নিউজ সাইটে ভারতের স্বার্থরক্ষা' কোথা হতে আসে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা? ঢিলেঢালা কাপড়ের ফ্যাশন আবার আসছে? বাংলাদেশে পেঁয়াজ সঙ্কটের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল গত মাসের গোড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক মন্তব্যে। +text: রাজাকার তালিকা স্থগিত করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে ওই তালিকা সরিয়েও ফেলা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, রাজাকারের তালিকা যাচাই করে সংশোধনের জন্য আগামী ২৬শে মার্চ পর্যন্ত সেটি স্থগিত করা হয়েছে। ওদিকে আওয়ামী লীগের এক সভায় বক্তব্যকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কোলাবরেটরদের তালিকা করতে গিয়ে গোলমাল পাকিয়ে ফেলেছে। অনেক মুক্তিযোদ্ধার নাম ঢুকে গেছে। এটা কোনোভাবেই রাজাকারের তালিকা নয়। এতে যারা কষ্ট পেয়েছেন তাদের শান্ত হতে ও ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ করে তিনি বলেন রাজাকার,আল-বদর,আল-শামস সবার তালিকা গেজেট করা আছে। তবে নতুন তালিকা কবে প্রকাশিত হবে সেটি সরকারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়নি। মন্ত্রণালয়ের সচিব এস এম আরিফ-উর-রহমান জানিয়েছেন, যাচাই-বাছাই করে সংশোধিত তালিকা প্রকাশে যতটা সময় লাগে, ততটা সময়ই তারা নেবেন। সেক্ষেত্রে কবে নাগাদ নতুন তালিকা প্রকাশিত হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, "গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সঠিক ভাবে যাচাই-বাছাই করে একটি নির্ভুল তালিকা করা। আমরা সেটিকেই গুরুত্ব দিচ্ছি"। গত রোববারে প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় অনেক মুক্তিযোদ্ধা, এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক কয়েকজনের নাম অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে, এমন অভিযোগ ওঠার পর এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। দশ হাজার ৭৮৯ জনের ওই তালিকা প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল যে এরা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার, আল-বদর, আল-শামসসহ স্বাধীনতাবিরোধী বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল । তালিকা প্রকাশের পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম হয় এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী জানান যে ভুলভাবে কোনো মুক্তিযোদ্ধার নাম এলে তাদের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হলে তা তদন্ত করে তালিকা সংশোধন করা হবে। ওদিকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলনকারী সংগঠনগুলো ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান বাহিনীকে সহায়তাকারী রাজাকার, আল-বদরসহ স্বাধীনতা বিরোধীদের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাম আসার বিষয়ে তদন্তের দাবি তোলেন। এদিকে আজই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, তালিকাটি যাচাই-বাছাই ও সংশোধনের পর নতুন করে প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এর কয়েক ঘণ্টা পরই 'বিতর্কিত তালিকাটি' ২৬শে মার্চ পর্যন্ত স্থগিতের ঘোষণা দেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী। সরকার আগেই বলেছিল রাজাকারের তালিকা তৈরি এবং তা প্রকাশ করা হবে - ফাইল ছবি বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: রাজাকারের তালিকা: আবেদন করলে 'সংশোধন' হবে মুক্তিযুদ্ধের সময় যেভাবে গঠিত হয়েছিল রাজাকার বাহিনী দোষ প্রমাণের আগে 'রাজাকার' না বলার পরামর্শ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর প্রকাশিত রাজাকারের তালিকাটি নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক ওঠায় শেষ পর্যন্ত সেটি স্থগিত করেছে সরকার। +text: সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা। কী আছে প্রতিবেদনে? বিশ্বের মোট ৬০টি দেশের ওপর জরিপ চালিয়ে ঐ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সাইবার নিরাপত্তায় দিকে থেকে সবচেয়ে অনিরাপদ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন স্মার্���ফোন ব্যবহারকারীরা। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রায় ৩৬ শতাংশের স্মার্টফোনই ম্যালওয়ারে আক্রান্ত। এছাড়া কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে ম্যালওয়ার আক্রান্তের হার ১৯ দশমিক ১ শতাংশ। ঐ রিপোর্ট অনুযায়ী সাইবার নিরাপত্তায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ আলজেরিয়া। তালিকায় এর পর যথাক্রমে ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, তানজানিয়া এবং উজবেকিস্তানের স্থান। নিরাপত্তার দিক থেকে বাংলাদেশের পরই রয়েছে পাকিস্তান। ঝুঁকির বিচারে তালিকায় চীন ১৩ নম্বরে এবং ভারত ১৫ নম্বরে রয়েছে। আরো পড়ুন: আপনার মোবাইল কি গোয়েন্দাগিরি করছে? মোবাইল ফোন আমাদের শরীরের কতটা ক্ষতির কারণ? মোবাইল টাওয়ার কতটা বিপজ্জনক মানুষের জন্য? মোবাইল ‍সেটও নিবন্ধন করতে হবে: যা জানা দরকার কেন অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা ঝুঁকিতে? কমপারিটেকের ঐ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে অ্যানড্রয়েড ফোন ব্যবহারকারীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। এর কারণ হিসেবে তথ্য-প্রযুক্তিবিদ জাকারিয়া স্বপন বলছেন, বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের গ্রাহক প্রায় দশ কোটি হবার পরও সাধারণ মানুষ এর ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন নয়। আর স্মার্টফোন কিভাবে ব্যবহার করতে হবে এ বিষয়ে মানুষ আসলে এখনও ঠিকভাবে জানে না। "দেখা যাবে ফোনের সফটওয়্যার আপগ্রেড করার জন্য কিংবা কোন অ্যাপস, সেটা বিনোদনমূলক বা গেমস হতে পারে, ডাউনলোড করার জন্য মানুষ মার্কেটে বা পাড়ায় ফোনের দোকানে যায়।" "সেখান থেকে সহজেই গ্রাহকের অজান্তে ম্যালওয়্যার ইনস্টল হয়ে যায় বেশিরভাগ সময়," বলছিলেন তিনি। "ধরুন আপনি কোন সফটওয়্যার নিচ্ছেন বা একটা গান নিয়েছেন ফোনে, তার সঙ্গে একটি ভাইরাস চলে আসলো। কম্পিউটারে যেমন, এক পেনড্রাইভ থেকে অন্য পেনড্রাইভে কিছু নিলে ভাইরাস চলে যায়, সেরকম ব্যপারটা।" সেক্ষেত্রে অ্যান্ড্রয়েড ফোন ঝুঁকিপূর্ণ হবার কারণ হচ্ছে, বাংলাদেশে শতকরা ৯৫ শতাংশ স্মার্টফোনই অ্যান্ড্রয়েড প্রযুক্তিতে চলে। মোবাইল ফোন আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের হিসাব অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে নয় কোটি মোবাইল ফোন সক্রিয় রয়েছে। আর সিম সক্রিয় রয়েছে ১৫ কোটি। মোট ফোনের মধ্যে স্মার্টফোন ব্যবহার করেন ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ মানুষ। মি. জাকারিয়া জানিয়েছেন, স্মার্টফোনের দুই ধরণের অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে, আইওএস। এটি অ্যাপল ইনকর্পোরেটেডের তৈরি একটি মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম, যা এই প্রতিষ্ঠানের তৈরি করা যন্ত্র যেমন আইফোন, ম্যাকবুক ও আইম্যাকে ব্যবহার করা হয়। অন্যটি হচ্ছে, অ্যান্ড্রয়েড—বাকী সব স্মার্টফোন চলে যে অপারেটিং সিস্টেমে। "আইওএসের বাজার খুবই নিয়ন্ত্রিত, যেকোন জায়গায় চাইলেই আইওএস আপগ্রেড করা যায় না, বা এই অপারেটিং সিস্টেমে চলা যন্ত্রসমূহে চাইলেই যেকোন অ্যাপস ইনস্টল করা যায় না, ফলে এটি অনেক নিরাপদ।" তিনি বলেন, "অ্যান্ড্রয়েড তো 'ওপেন এন্ডেড', সবাই ব্যবহার করতে পারে। যেকোন জায়গায় এটি আপগ্রেড করা যায়, এতে যেকোন অ্যাপস ডাউনলোড করা যায়। ফলে ম্যালওয়্যার ইনস্টল হয়ে যেতে পারে যেকোন সময়।" "এছাড়া মোবাইলে যখন অ্যাপস ডাউনলোড করা হয়, অনেক ব্যবহারকারীই এর টার্মস এ্যান্ড কন্ডিশন ঠিকমত পড়ে দেখেন না।" "ফলে গ্রাহক নিজের অজান্তেই ফোনের মেসেজ, কল রেকর্ড, ব্যক্তিগত ছবি বা ভিডিও অনেক কিছুর অ্যাকসেস দিয়ে দেন ঐ অ্যাপসের মালিককে। সেখান থেকেও ঝুঁকিতে পড়ে স্মার্টফোন ব্যবহারকারী," এমনটাই মনে করেন তিনি। মোবাইল ফোনের অনেক অ্যাপ নানা বিষয়ে প্রবেশাধিকার চেয়ে থাকে। কীভাবে সাবধান হওয়া যাবে? তথ্য-প্রযুক্তিবিদ জাকারিয়া স্বপন বলছেন, প্রথমেই একজন ব্যবহারকারীকে যথার্থ সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে। "প্রথমেই অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহার করলে প্রপার অ্যান্ড্রয়েড ডাউনলোড করবো। দ্বিতীয়ত, যখনই কোন অ্যাপস ডাউনলোড করবো, এর শর্ত সমূহ পড়ে ও জেনে নামাতে হবে।" এছাড়া ফোনে বা কম্পিউটারে যখনই কোন মেইল আসবে, সেটি ফিসিং মেইল কিনা নিশ্চিত না হয়ে সেটা ওপেন করা উচিত নয়। কেবল স্মার্টফোন ব্যবহারকারীই নন, যেকোন কম্পিউটারেও যেকোন সময় ম্যালওয়্যার ইনস্টল হয়ে যেতে পারে। যেমন, তিন বছর আগে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির যে ঘটনা ঘটে, হ্যাকিং এর সেই ঘটনাটি ঘটানো হয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেমে ম্যালওয়্যার ইনস্টল করে। সে অর্থ উদ্ধারে এ মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে রাখা রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া ৮১ মিলিয়ন ডলার ফেরত পেতে নিউইয়র্কের ম্যানহাটন ডিসট্রিক্ট কোর্টে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। আরো পড়ুন: রিজার্ভ চুরির আগে চাকরি চেয়েছিল হ্যাকাররা 'কনসালটেন্সি ফি' নামে রিজার্ভ সরিয়েছিল হ্যাকাররা বসের ফোন না ধরলে ধমক খাওয়ার দিন শেষ হচ্ছে? সাইবার নিরাপত্তায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান একেবারে নিচের সারিতে। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সাইবার নিরাপত্তা গবেষণা প্রতিষ্ঠান কমপারিটেকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাইবার নিরাপত্তার দিক থেকে সব চাইতে ঝুঁকিতে থাকা দশটি দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। +text: পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে ভারত সরকারের যে কোন পদক্ষেপের বিরোধিতা করা বাংলাদেশে বেশ 'স্পর্শকাতর' বিষয় হয়ে উঠেছে বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করেন। ডাকসুর ভাইস-প্রেসিডেন্ট বা ভিপি নুরুল হক নূরের ওপর সর্বশেষ হামলার ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে বেশী আলোচনা হচ্ছে। ভারত বিরোধিতার জন্যই হামলা? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে নুরুল হক নূরের ওপর এ নিয়ে নয়বার হামলা হলো। প্রতিবারই হামলার সাথে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নাম জড়িয়ে অভিযোগ এসেছে। তবে ছাত্রলীগ সবসময় তা অস্বীকার করেছে। তবে এ দফা নুরুল হক এবং তার সহযোগীদের ওপর পরপর দু'দফায় যে হামলার ঘটনা ঘটেছে, তার কারণ অনেককে বিস্মিত করেছে। ভিপি নূর এবং তার সহযোগীদের ওপর প্রথম দফায় হামলার ঘটনাটি ঘটে ১৭ই ডিসেম্বর। ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবেশ করার সময় তাদের ওপর হামলা হয় এবং অভিযোগের আঙ্গুল ওঠে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের একটি সংগঠনের নেতা-কর্মীদের দিকে। ডাকসু ভিপি নুরুল হক তবে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এমন অভিযোগ উঠে এসেছে যে হামলার সাথে জড়িতরা ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত। হামলার সাথে অভিযুক্তরা পরে বলেন যে 'ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়' নিয়ে আন্দোলন করার এখতিয়ার নেই ডাকসু ভিপি'র। এরই ধারাবাহিকতায় দু'দিন পর ডাকসু কার্যালয়ে ভিপি নূর এবং তার সহযোগীদের উপর আবারো হামলার ঘটে। ওই হামলার সময় বাতি নিভিয়ে নুরুল হক নূরসহ অনেককে নির্মমভাবে পেটানো হয়। আহত একজনকে এমনকি লাইফ সাপোর্টেও রাখতে হয়েছিল। এবারে মি: নূরকে দায়ী করা ক্যাম্পাসে 'বহিরাগত' নিয়ে আসার জন্য। তবে হামলার উদ্দেশ্য নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন রয়েছে। হামলার পর একদিকে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা যখন হাসপাতালে আহতদের দেখে 'সমবেদনা প্রকাশ' করেছেন, অন্যদিকে দলটির কোন কোন সিনিয়র নেতা ডাকসু ভিপির উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, "আমরা অতীতে দেখেছি যে ডাকসু ভিপি নূর এ ধরণের ঘটনার মাধ্যমে আলোচনায় থাকতে চান।" তিনি অভিযোগ করেন যে ছাত্রদের 'সংশ্লিষ্ট বিষয় বাদ দিয়ে ভারতের ঘটনা প্রবাহ নিয়ে' সেখানে আন্দোলন করার চেষ্টা হয়েছে, যেগুলো ডাকসুর কাজ নয়। "ডাকসুর কাজ হচ্ছে ছাত্রদের বিষয়-আসয় নিয়ে কথা বলা। ... সেটি না করে ভারতের বিষয় নিয়ে সেখানে আন্দোলন করার চেষ্টা, বহিরাগতদের নিয়ে সেখানে উপস্থিত হওয়া, এগুলো ঘটনা ঘটানোর জন্য ইন্ধন কি-না, এগুলো খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে।" নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ভারতের এলাহাবাদে বিক্ষোভ। মি: নূরের সমর্থনে যারা কথা বলেছেন, তাদের অনেকেরই ধারণা যে ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বাংলাদেশে যাতে নতুন করে কোন প্রতিবাদ তৈরি না হয়, সেজন্যই হামলার ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ বিষয়টিকে গোড়াতেই শেষ করতে চায় সরকার-পন্থী সংগঠনগুলো, মনে করছেন তার সমর্থকেরা। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও এনিয়ে নিয়ে চলছে আলোচনা। শফিক ইসলাম নামে একজন বিবিসি বাংলার ফেসবুক পেজে মন্তব্য করেছেন, "নুরু-রাশেদ-রফিকের মতো ছেলেদের বেচে থাকা জরুরী। ভারতীয় আগ্রাসন থেকে রক্ষা পেতে হলে এদের কোন বিকল্প নেই।" মোহাম্মদ মানিক নামে আরেকজন প্রশ্ন তুলেছেন, "ভারতের বিরুদ্ধে কথা বললেই এরা কেন হামলা করে?" তুহিন নামে আরেকজন মন্তব্য করেছেন, "যে যাই করুক, ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলা যাবে না। ইন্ডিয়ার বিপক্ষে কথা বলায় আবরারকে জীবন দিতে হলো। ভিপি নূরদের উপর অতর্কিতে হামলা হলো।" অরুন্ধতী রায়ের অনুষ্ঠান চলতি বছরের মার্চ মাসে ঢাকায় এসেছিলেন ভারতের সুপরিচিত লেখক অরুন্ধতী রায়। ঢাকায় দৃক গ্যালারির আয়োজনে ছবি মেলায় যোগ দিতে তিনি ঢাকায় এসেছিলেন। তখন আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের সাথে অরুন্ধতী রায়ের একটি কথোপকথনের অনুষ্ঠান ছিল। ভারতীয় লেখক অরুন্ধতী রায়। সে অনুষ্ঠানের জন্য প্রথমে স্থান নির্ধারণ করা হয়েছিল ঢাকার খামার বাড়ির কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট। তবে পরে পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের বলা হয়েছে যে 'অনিবার্য পরিস্থিতির' কারণে অনুষ্ঠানটি স্থগিত করা হল। পুলিশ এজন্য নির্দিষ্ট কোন কারণ না জানালেও তখন অভিযোগ উঠেছিল য�� অরুন্ধতী রায় যেহেতু ভারতের বর্তমান সরকারের একজন কড়া সমালোচক, সেজন্য তার অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বেশ তাড়াহুড়া করে সংক্ষিপ্ত পরিসরে অন্য একটি স্থানে এই অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়েছিল। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বিরোধী বিক্ষোভ সুন্দরবনের কাছে রামপালে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ উদ্যোগে কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে বাংলাদেশে আপত্তি উঠেছিল। আর যে বিদ্যুৎকেন্দ্র বিরোধী যে আন্দোলন গড়ে ওঠে, তার সামনের কাতারে ছিল বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠন। এ আন্দোলন করার সময় কয়েক দফায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় সরকারপন্থী সংগঠনের হামলার শিকার হয়েছিল আন্দোলনকারীরা। রামপালে প্রকল্প বিরোধী আন্দোলনের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা তখন বারবার বলেছেন যে ওই আন্দোলনের সাথে ভারত বিরোধিতার কোন সম্পর্ক নেই বরং বিষয়টি পুরোপুরি পরিবেশগত। কিন্তু বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন যে ওই আন্দোলনের সাথে ভারত বিরোধিতার একটি সম্পর্ক আছে এমন ধারণা সরকারপন্থী সংগঠনগুলোর কারো কারো মধ্যে রয়েছে। রামপাল বিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে ছিল, তখন জ্বালানী এবং বিদ্যুৎ খাতের ম্যাগাজিন 'এনার্জি ও পাওয়ার'-এর সম্পাদক মোল্লা আমজাদ হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, রামপাল প্রকল্পের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই একটি প্রচারণা আছে যে ভারতীয় অংশে সুন্দরবনের কাছে প্রকল্পটি করতে না পেরে তা বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। রামপালে নির্মীয়মান প্রকল্পের সাইট। মি: হোসেন বলেন, "অনেকে মনে করছেন ইন্ডিয়ান গর্ভমেন্ট চাইলেই এটি বন্ধ হয়ে যাবে। যেহেতু বাংলাদেশের সরকারের কাছ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না, সেজন্য প্রকল্পের বিরোধিতাকারীরা এটাকে অ্যান্টি-ইন্ডিয়ান সেন্টিমেন্ট হিসেবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে।" ভারত বিরোধিতা নিয়ে সমস্যা কোথায়? ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে কথা বলতেও বাংলাদেশের সাবেক কূটনীতিকদের অনেকেই অস্বস্তি বোধ করেন। অনেকেই নাম প্রকাশ করে মন্তব্য করতে চাননি। বক্তব্যে ভারত বিরোধিতা প্রকাশ পেলে কোন ধরণের ঝামেলায় জড়ানোর আশংকা রয়েছে কারো কারো মনে। এদের কেউ কেউ মনে করছেন, বিষয়টির একটি রাজনৈতিক মাত্রা আছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে গত প্রায় এগারো বছর যাবত ভারতের বেশ ভালো সম্পর্ক বজায় রয়েছে। এমনকি বাংলাদেশে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের বিতর্কিত সাধারণ নির্বাচনে ভারত অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছে। ফলে ভারতের উপর বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের এক ধরণের রাজনৈতিক নির্ভরতা তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে। বাংলাদেশের সাবেক একজন কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসি বাংলাকে বলেন, দুই দেশের মধ্যে বর্তমানে যে ধরণের সম্পর্ক চলছে সেটি 'সুষ্ঠু সম্পর্কের' জন্য ইতিবাচক নয়। সম্প্রতি ডাকসু ভিপি নূরের উপর হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "যে কোন ইস্যুতে দেশ কিংবা বিদেশ বলে কোন কথা নেই। আমাদের স্বার্থের সাথে সম্পর্কিত যে কোন বিষয় নিয়ে কথা বলতে হবে।" তিনি প্রশ্ন তোলেন, "আমেরিকা যখন ইরাক আক্রমণ করেছে, তখন বাংলাদেশে আমেরিকা বিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে না?" বাংলাদেশের সাবেক আরেকজন কূটনীতিক হুমায়ুন কবির বিবিসি বাংলাকে বলেন, ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। এবং বাস্তবতার ভিত্তিতেই এ সম্পর্ক নির্ধারিত হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। মি: কবির বলেন, "এখানে যত বেশি খোলামেলা আলাপ-আলোচনা হবে এবং যুক্তি-তর্ক হবে, সম্পর্ক ততই শক্তিশালী হবে।" বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন ইস্যুতে যখনই ভারত সরকারের সমালোচনার চেষ্টা হয়েছে, তখনই প্রতিবাদকারীরা ক্ষমতাসীন দলের কর্মী-সমর্থকদের প্রতিবন্ধকতা কিংবা হামলার মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। +text: গার্ড অব অনারে নরেন্দ্র মোদির সাথে বার্মিজ প্রেসিডেন্ট তার সফরের সময় যত এগিয়েছে, ভারত সরকারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা বিরোধী কথাবার্তাও শোনা গেছে। ২৫মে আগস্ট রাখাইন রাজ্যের বেশ কটি পুলিশ ফাঁড়িতে সন্দেহভাজন রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, "সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ভারত সবসময় মিয়ানমারের পাশে থাকবে।" তারও আগে ভারতের বিজেপি সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজুজু ঘোষণা করেন, ভারতে বসবাসরত ৪০হাজার রোহিঙ্গার সবাইকে বহিষ্কার করা হবে। যদিও ভারতে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ১৬০০০ জাতিসংঘ নিবন্ধিত শরণার্থী, তবুও মি রিজুজু বলেন, "জাতিসংঘের নিবন্ধনের কোনো অর্থ নেই। আমাদের কাছে ওরা সবাই অবৈধ।" কলকাতায় বিবিসির সাবেক সাংবাদিক সুবীর ভৌমিক, যিনি বর্তমানে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে রয়েছেন, বলছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর সফরের ঠিক আগে দিল্লির পক্ষ থেকে এসব বক্তব্য বিবৃতির মূল্য উদ্দেশ্য বৌদ্ধ অধ্যুষিত মিয়ানমারের সাথে অধিকতর ঘনিষ্ঠতা। সংখ্যাগরিষ্ঠ বার্মিজদের রোহিঙ্গা বিরোধী কট্টর মনোভাবের সাথে একাত্ম হতে চাইছে ভারত। মি ভৌমিক বলছেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে চীনের মৌনতার সুযোগ কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি সরকার। আরও শুনুন: রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে সুচিকে এরদোয়ানের ফোন গত অক্টোবরে দিল্লি সফরে গিয়েছিলেন অং সান সুচি ভারতের মনিপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মিয়ানমার স্টাডি সেন্টারের অধ্যাপক জিতেন নংথাওবামকে উদ্ধৃত করে সুবীর ভৌমিক বলছেন - "মুসলিমদের প্রশ্নে বার্মিজ জাতীয়তাবাদী এবং কট্টর বৌদ্ধরা মি মোদি এবং তার দল বিজেপির সাথে একাত্ম বোধ করে।" ভারত যে সম্প্রতি বিশেষ অভিযানের জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা বলেছেন, সেটাকেও দেখা হচ্ছে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনা অভিযানের প্রতি দিল্লির সমর্থন হিসাবে। মি ভৌমিক বলছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সাথে ভারত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরিতে উন্মুখ কারণ, ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে বিদ্রোহী তৎপরতায় লিপ্ত যোদ্ধাদের অনেকেই মিয়ানমারের জঙ্গলে গিয়ে আশ্রয় নেয়। ফলে তাদের শায়েস্তা করতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সহযোগিতা ভারতের প্রয়োজন। মিয়ানমারে ভারত এখন কিছু গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পের সাথে যুক্ত। রাখাইন রাজ্যেই ভারত একটি বন্দর এবং নদীপথ প্রকল্পে জড়িত। ভারতের মিজোরাম এবং রাখাইন রাজ্যের মধ্যে একটি সড়ক নির্মাণেও ভারত জড়িত। সুবীর ভৌমিক বলছেন, ভারতের মূল উদ্দেশ্য মিয়ানমারে চীনের প্রভাব বলয়ে ফাটল ধরানো। রোহিঙ্গা নির্যাতনের প্রতিবাদে কলকাতার মুসলিমদের বিক্ষোভ (ফাইল ফটো) তার মিয়ানমার সফরে নরেন্দ্র মোদি বাগান এলাকায় ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত একটি প্যাগোডা দেখতে যাবেন। এই প্যাগোডাটি ভারত সংস্কার করে দিচ্ছে। স্থানীয় স্টেডিয়ামে তিনি একটি জনসভাতেও ভাষণ দেবন। সম্ভাব্য উদ্দেশ্য - ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক ভাবাবেগ ব্যবহার করে বার্মিজ জাতীয়তাবাদীদের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা। নতুন করে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগের মাঝে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (মঙ্গলবার) থেকে মিয়ানমার সফর করছেন। +text: জিনোম সিকোয়েন্সিং এর মাধ্যমে এই শিশুটির রোগ নির্ণয় সম্ভব হয়েছ�� সামনের বছর থেকে গুরুতর অসুস্থ ব্রিটিশ শিশু যারা কোন অজানা-রোগে আক্রান্ত, তাদের জিনোম বিশ্লেষণ করা যাবে বলে জানা গেছে। কিভাবে কাজ করবে? জিনোম সিকোয়েন্সিং বা ডিএনএ-এর ক্রমবিন্যাস হচ্ছে একজন মানুষের দেহে থাকা তার সকল জেনেটিক কোডকে একের পর এক বিন্যস্ত করা এবং অনুসন্ধান করা যে সেখানে কোথাও কোন অসামঞ্জস্য ঘটেছে কিনা। এডেনব্রুক হাসপাতাল ও ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় একটি প্রকল্পের আওতায় এই কাজটি করা হচ্ছে। এই প্রকল্পে কাজ করতে গিয়ে দেখা যায় যে, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে থাকা প্রতি চারজন শিশুর একজন জেনেটিক ডিজ-অর্ডার বা জিনগত-বৈকল্যের শিকার। বিরল এক জেনেটিক ডিজ-অর্ডার নিয়ে জন্মেছিল সেরেন নামে শিশুটি এ প্রকল্পে কাজ করার সময় গবেষকেরা দুই তিন সপ্তাহের মধ্যেই জিনোম ক্রমবিন্যাস করে দিতে পেরেছেন এবং তার ভিত্তিতে অনেক ক্ষেত্রে পরে শিশুর চিকিৎসায় পরিবর্তনও আনা হয়েছে। জিনোম ক্রমবিন্যাসের ক্ষেত্রে প্রত্যেক শিশু এবং তাদের বাবা-মা উভয়েরই জিনোম ক্রমবিন্যাস করা হয়েছে। আর এর মাধ্যমেই দেখা হয়েছে যে, শিশুর জিনোমে কোথাও কোন ত্রুটি ঘটে গেছে কিনা। 'দ্রুত অর্থপূর্ণ ফল' নেক্সট জেনারেশান চিলড্রেন বা পরবর্তী প্রজন্মের শিশু নামের একটি গবেষণা প্রকল্পের আওতায় এডনব্রোক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে থাকা প্রায় ৩৫০ জন শিশুর জিনোম ক্রমবিন্যাস করা হয়েছে। প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, শিশু মায়ের গর্ভে আসার সময়েই স্বয়ংক্রিয়ভাবেই জিনগত ত্রুটির বিষয়টি ঘটে গেছে। আরো পড়ুন: পাকিস্তানে শত শত শিশু কেন এইচআইভিতে আক্রান্ত? শিশুকে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে কিভাবে আগ্রহী করবেন অতিরিক্ত মোটা শিশুরা বেশি রাগী হয় - গবেষণা অর্থাৎ বাবা বা মায়ের এই ত্রুটি থাকার কারণে উত্তরাধিকারসূত্রে শিশুরা জিনগত ত্রুটিটি পায়নি বরং সেটি ছিল একটি স্বয়ংক্রিয় ঘটনা। কোন ধরণের রোগ নির্ণয় করা যাবে? যে শিশুদের জিনোম সিকোয়েন্স করা হয়েছে তাদের মধ্যে জন্মগত অস্বাভাবিকতা, স্নায়বিক অসুস্থতা যেমন মৃগীরোগ, হজম সংক্রান্ত সমস্যা ও শরীরের বৃদ্ধি কম হওয়ার মতন রোগী ছিল। এই প্রকল্পের নেতৃত্ব দিয়েছেন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল জেনেটিক্স ও নিউরো ডেভেলপমেন্টের অধ্যাপক লুসি রেমন্ড। মিজ রেমন্ড বলেছেন, "এটি খুবই আশ্চর্যের বিষ��় যে মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পুরো জিনোম ক্রমবিন্যাস করে এখন একটা অর্থপূর্ণ ফল জানিয়ে দেয়া যায়। কিন্তু আমার চিকিৎসক-জীবনের শুরুতে আমরা একটা সামান্য জিন খুঁজে পেতে বছরের পর বছর লেগে যেতো।" অধ্যাপক রেমন্ড বলেছেন, ২০২০ সাল থেকে পুরো ইংল্যান্ডে জেনোমিক মেডিসিন সার্ভিস চালু হবে। বিবিসি বাংলায় দেখুন: শিশুর বিকাশে যা ভুলে যাওয়া উচিত নয় অর্থাৎ কোন শিশুর রোগ ব্যাখ্যা করা যাচ্ছে না এমন কোন রোগ নিয়ে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ভর্তি হলে তার জন্যে জিনোম ক্রমবিন্যাস সেবা পাওয়া যাবে। এটি চালু হলে ইংল্যান্ডই হবে পৃথিবীর প্রথম কোন দেশ যেখানে এমন সেবা পাওয়া যাবে। পরিবারগুলোর জন্য এর মানে কী? প্রথমত, খুব দ্রুত রোগ নির্ণয়। এটি ঘটেছিল মৃগী রোগে আক্রান্ত দুই বছর বয়সী শিশু মিলি-মেই এর বাবা-মা ক্লেইরি কোল ও ক্রিস ডেলির ক্ষেত্রে। গত বছর, গুরুতর অবস্থায় মিলি-মেইকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর তার বাবা-মাকে জিনোম ক্রমবিন্যাসের সুযোগ দেয়া হয়েছিল। মিলি-মেই এর মা ক্লেইরি বলেছেন, "আমার মেয়ে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে থাকতে থাকতেই আমাদেরকে জিনোম ক্রমবিন্যাসের ফলাফল জানানো হয়েছিল। পরে এর ভিত্তিতেই একটি ওষুধে পরিবর্তন আনা হয়েছিল।" কারণ সেই ওষুধটি ছিল তার মেয়ের যে ধরণের মৃগীরোগ সেটির জন্য ক্ষতিকর। ক্লেইরি বলেছেন, "ওষুধটা বদলানোর সাথে সাথেই বিরাট একটা পার্থক্য দেখ গেলো।" মিলি-মেই এর বাবা ক্রিস বলছিলেন, তার মেয়ের যে জিনগত সমস্যা তৈরি হয়েছে সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই হয়েছে। বাবা-মায়ের থেকে মিলি-মেই'র কাছে এটি পরিবাহিত হয়নি। অধ্যাপক রেমন্ড বলেছেন, এখন থেকে বাবা-মায়েদেরকে আর রোগ নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন ধরণের বিশেষজ্ঞের কাছে ছোটাছুটি করে একই কাহিনী বারংবার বলতে হবে না। বরং এখন সেই সময়টা তারা শিশুর পরিচর্যায় কাজে লাগাতে পারবেন। এখন এক হাজার পাউন্ডের চেয়ে কম অর্থে জিনোম ক্রমবিন্যাস করা যায়। এর ফলে, রোগ নির্ণয়ের জন্য বারবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়ে যে খরচ হয় তা কমে আসবে বলে মনে করছেন অধ্যাপক রেমন্ড। জিনোম ক্রমবিন্যাসের ফলে পরিবারগুলো আর কী সুবিধা পাবে? কেটি ও পিকেনের মেয়ে সেরেন কেন মারা গিয়েছিল, তা জানা গিয়েছিল এই জিনোম ক্রমবিন্যাস থেকে। আর এর মাধ্যমেই তারা জানতে পেরেছিলেন যে, তাদের ছেলে রেইস রোগাক্রান্ত ���য়নি। সেরেনের জন্ম ২০১৭ সালে। আপাতদৃষ্টিতে সে সুস্থ-সবলই ছিল। কিন্তু কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সে অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে মাত্র ১৩ সপ্তাহের মাথায় সে মারা যায়। সেরেন ও তার বাবা-মায়ের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা ছিল। সেটাই পরে জিনোম ক্রমবিন্যাসের জন্য পাঠানো হয়। পরে, সেখানেই তার জিনগত একটি গুরুতর অসংগতির কথা জানা যায়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে কেটি আবারো গর্ভবতী হলে এই দম্পতি এডেনব্রুক হাসপাতালের সাথে যোগাযোগ করে এবং গর্ভজাত সন্তান কোনো ঝুঁকিতে আছে কিনা জানতে চায়। সেরেনের ক্ষেত্রে মা-বাবা দুজনের থেকেই ত্রুটিযুক্ত জিন পরিবাহিত হয়েছিল। কিন্তু জানা যায় যে, কেটির গর্ভজাত সন্তানের কোনো সমস্যা হয়নি। জিনোম সিকোয়েন্সিং বা ডিএনএ-এর ক্রমবিন্যাসের মাধ্যমে বিরল রোগে আক্রান্ত শিশুদের রোগ নির্ণয়ে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা যাবে বলে জানিয়েছেন ক্যামব্রিজের একদল গবেষক। +text: ২০১৬ সালে ইরান সফরের সময় আয়াতোল্লাহ খামেনির সাথে বৈঠকের সময় চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ২৫ বছরের কৌশলগত চুক্তির প্রস্তাব করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ স্বয়ং গত সপ্তাহে জানিয়েছেন, ইরানের মন্ত্রীসভা চুক্তির চূড়ান্ত খসড়া অনুমোদন করেছে। বাকি রয়েছে দুই দেশের পার্লামেন্টের অনুমোদন এবং দুই প্রেসিডেন্টের সই। পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরযোগ্য ডজন-খানেক মিডিয়ায় বিভিন্ন নিবন্ধে বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন ও ইরানের এই চুক্তি মধ্যপ্রাচ্য তথা এশিয়ার বিরাট একটি অংশের ভূ-রাজনৈতিক চালচিত্র বদলে দেবে। ইরানে চীনা সৈন্য মোতায়েনের সুযোগ চীন এবং ইরানের সরকার এখনও এই চুক্তির বিস্তারিত কিছু ভেঙ্গে বলছে না তবে, নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং হংকং-ভিত্তিক এশিয়া টাইমসসহ বেশ কিছু শীর্ষ সারির মিডিয়া বলছে তারা ১৮-পাতার খসড়া চুক্তিটি দেখেছে। গত বছর চীন সফরের সময় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ এবং চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সেই সূত্রে এবং সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সূত্রে প্রকাশিত নানা তথ্যের ভিত্তিতে যা জানা গেছে তাতে ইরানের তেল-গ্যাস, ব্যাংকিং, টেলিকম, বন্দর উন্নয়ন, রেলওয়ে উন্নয়ন এবং আরো কয়েক ডজন খানেক গুরুত্বপূর্ণ খাতে চীন ব্যাপক বিনিয়োগ করবে। এই বিনিয়োগের পর���মাণ আগামী ২৫ বছরে কমপক্ষে ৪৪ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ হতে পারে। সেই সাথে প্রস্তাবিত চুক্তিতে সামরিক ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ‘যৌথ প্রশিক্ষণ, মহড়া, গবেষণা, যুদ্ধাস্ত্র তৈরি এবং গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদানের‘ কথা রয়েছে। মিডল-ইস্ট আই নিউজ ওয়েবসাইটে একটি রিপোর্টে লেখা হয়েছে, চুক্তির আওতায় চীন তাদের বিনিয়োগের সুরক্ষায় ইরানে পাঁচ হাজার পর্যন্ত সৈন্য মোতায়েন করতে পারবে। সুতরাং এই চুক্তি সই হলে, মধ্যপ্রাচ্যে এই প্রথম সরাসরি চীনা সামরিক উপস্থিতির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিনিয়োগের বদলে জ্বালানি কেনার ক্ষেত্রে চীনকে অনেক ছাড় দেবে ইরান। বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম মূল্যে তেল-গ্যাস পাবে চীন এবং চীনা মুদ্রায় দেয়া সেই দাম পরিশোধ করতে পারবে। মিডিয়ায় ফাঁস হওয়া চুক্তির এসব শর্ত নিয়ে ইরান বা চীনের সরকারের পক্ষ থেকে খোলাসা করে কিছু বলা হয়নি। তবে সোমবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্বাস মুসাভি এই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন : “(চীনের সাথে প্রস্তাবিত এই চুক্তি) ইরানের কূটনীতির জন্য গর্ব করার মত একটি অধ্যায়।" ইরান কেন এই পথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী ইরানীরা লস অ্যাঞ্জেলসে চীনের সাথে চুক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছেন আরো পড়তে পারেন: ইরানের রেল প্রকল্প ভারতের হাতছাড়া হওয়ার পেছনেও চীন? ইরান-মার্কিন সংঘর্ষের নতুন ঝুঁকি, বিপজ্জনক বাকযুদ্ধ ইরান-আমেরিকা সংঘাতে বাংলাদেশের দুশ্চিন্তা কোথায় ওয়াশিংটনে আরব গালফ স্টেটস ইন্সটিটিউটের সিনিয়র ফেলো আলী আলফোনেহ বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া ইরান এখন অস্তিত্বের স্বার্থে চীনের দ্বারস্থ হচ্ছে। জ্বালানি তেল ও গ্যাস মজুদের হিসাবে ইরান বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ দেশ হলেও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় জ্বালানি বিক্রি করা তাদের জন্য দুরূহ কাজ হয়ে পড়েছে। সেই সাথে বিনিয়োগের অভাবে তেল ক্ষেত্র উন্নয়নের পথও কার্যত বন্ধ হয়ে পড়েছে। চীনা বিনিয়োগ তাদেরকে সেই ‘মহাসঙ্কট‘ থেকে বের করে আনতে পারবে। জ্বালানি খাতের জন্য বিশেষ সাময়িকী পেট্রোলিয়াম ইকোনমিস্ট গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রথম প্রকাশ করে যে ইরানের তেল, গ্যাস এবং পেট্রো-কেমিক্যাল খাতে ২৮০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে চীন। ঐ সাময়িকী সে সময় বলে, “চীন ও ইরানের এই চুক্তি বিশ্��ের তেল ও গ্যাস খাতের ভারসাম্যে মৌলিক পরিবর্তন আনবে যেখানে লেনদেনের ক্ষেত্রে মার্কিন ডলারের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।" তবে অনেক পর্যবেক্ষক বলছেন, চীন ও ইরানের মধ্যে সম্পর্কে ঘনিষ্ঠতা হঠাৎ করে আকাশ থেকে পড়েনি। নব্বইয়ের দশকে থেকেই এই দুই দেশ সহযোগিতা নিয়ে কথা বলছে। ২০১৫ সালে ইরানের সাথে করা পারমানবিক চুক্তি থেকে একতরফাভাবে আমেরিকার সরে যাওয়া এবং ইরানের একের পর এক নিষেধাজ্ঞায় এই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়েছে। ইরানের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ন চাবাহার বন্দরে চীনের প্রভাব বাড়বে চীনের স্বার্থ কী ২০১৬ সালে শি জিন পিংয়ের ইরান সফরের সময় ২৫ বছরের একটি ‘কৌশলগত সহযোগিতা চুক্তি‘ নিয়ে দুই সরকারের মধ্যে প্রথম প্রাথমিক একটি বোঝাপড়া হয়। গত চার বছর ধরে তা চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে। কুয়ালালামপুরে মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউ আব চায়নার অধ্যাপক ড. মাহমুদ আলী বলেন, ইরানকে তাদের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড‘ প্রকল্পের মধ্যে শক্তভাবে আনার জন্য চীন অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করছে।" “মলাক্কা প্রণালী দিয়ে তাদের বাণিজ্য, বিশেষ করে জ্বালানি সরবরাহের নির্ভরতা কমানোর জন্য চীন বহুদিন ধরে উদগ্রীব, কারণ ঐ সমুদ্র রুটটির নিয়ন্ত্রণ এখনও যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের হাতে, সুতরাং ইরানকে পাশে পেলে সমুদ্র রুটকে পাশ কাটিয়ে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা চীনের জন্য অনেক সহজ হবে।“ “সুতরাং চীনের জন্য এটা বিরাট এক ভূ-রাজনৈতিক উদ্যোগ।“ ইতিমধ্যেই অবশ্য চীন ও ইরানের মধ্যে সরাসরি রেল লিংক রয়েছে। এই রেল রুট “নতুন সিল্ক রোড নামে“ পরিচিত যা শিনজিয়াং থেকে কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, কিরগিস্তানকে যুক্ত করে তেহরান পর্যন্ত ২৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ। তবে এই রুটকে আরো সংহত এবং আধুনিক এবং কার্যকরী করতে উদগ্রীব চীন। সহযোগিতা চুক্তি হওয়ার আগেই চীন ইরানের রেল অবকাঠামোর উন্নয়নের কাজে জড়িয়ে পড়েছে। চীনা কোম্পানি সিনোম্যাক পশ্চিম ইরানে নতুন একটি রেলর লাইন তৈরির চুক্তি সই করেছে।তবে বেইজিংয়ের সবচেয়ে বড় প্রকল্প তেহরান এবং মাশাদের মধ্যে ৯২৬ কিলোমিটার রেল লাইনের বিদ্যুতায়ন। তেহরান-কোম-ইস্পাহানের মধ্যে একটি দ্রুতগতির রেল লাইন নির্মাণ নিয়েও কথা হচ্ছে চীনের সাথে। এসব রেল প্রকল্প ‘নতুন সিল্ক রোডে‘র অংশ হবে। ২০১৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি তেহরান রে��� স্টেশনে চীন থেকে আগত একটি ট্রেনকে স্বাগত জানানো হচ্ছে। ইরানের রেল যোগাযোগের উন্নয়ন এবং সম্প্রসারণে চীন ব্যাপক বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে চীন-ইরান এই সম্পর্কের প্রভাব কি হবে? যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয় গবেষক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক শিরিন হান্টার মিডল-ইস্ট আইতে এক নিবন্ধে বলছেন, ইরানের সাথে চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যে চীনের অবস্থান সংহত করবে। “সেই সাথে ইরানের অর্থনীতির প্রভূত উন্নতি হবে। ফলে তাদের রাজনীতিও স্থিতিশীল হবে।“ মিজ হান্টার মনে করেন, ইরানের সাথে সংঘাতের ব্যাপারে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশের মধ্যে আগ্রহ কমবে। “এমনকি উপসাগরের অনেক দেশে চীনের সাথে এই ধরণের বিশেষ চুক্তিতে আগ্রহী হয়ে উঠতে পারে।" আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন কাবেহ আফছার সারসাইয়াবি। হংকংয়ের দৈনিক এশিয়া টাইমসে এক নিবন্ধে তিনি বলছেন, ইরান যদি চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয় তাহলে ঐ অঞ্চলের ভূ-রাজনীতির কৌশলগত সমীকরণ বদলে যাবে। তিনি বলেন, “খুব ধীরে হলেও নিশ্চিতভাবে চীন-ইরান এবং পাকিস্তানের মধ্যে একটি কৌশলগত জোট দানা বাঁধছে, যার সাথে অদূর ভবিষ্যতে যুক্ত হবে আফগানিস্তান, ইরাক এবং সিরিয়া।" তার মতে, নতুন এই ভূ-রাজনৈতিক সম্ভাবনা যুক্তরাষ্ট্র তো বটেই, তার মিত্র ভারতের জন্যও এটা নিঃসন্দেহে মাথাব্যথার কারণ। যুক্তরাষ্ট্রের রক্তচক্ষু তোয়াক্কা না করে চীন এবং ইরান তাদের মধ্যে ২৫ বছরের একটি ‘কৌশলগত সহযোগিতার‘ চুক্তি নিয়ে বোঝাপড়া চূড়ান্ত করে ফেলেছে বলে জানা গেছে। +text: ঢাকা মেডিকেলের দুজন ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা: শাশ্বত চন্দন, ডা: আনিকা ইবনাত শামা ও অনারারি মেডিকেল অফিসার ডা: কৃপা বিশ্বাস কেন সিলেটি গানের সাথে নেচে এই ভিডিওটি বানালেন? আইডিয়াটা তাদের মাথায় আসলো কীভাবে? বিবিসি বাংলার আফরোজা নীলাকে সেই গল্পই বলেছেন ডা: চন্দন ও ডা: আনিকা। ভিডিওটি দেখতে পাবেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলেও। এছাড়া আরও দেখতে পারেন- নয়া দামান গানটি নিয়ে হঠাৎ বিতর্ক কেন? সম্প্রতি ঢাকা মেডিকেলের তিন ডাক্তারের নাচের ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়ে। +text: অভিযান নিয়ে উঠেছে নানা বিতর্ক এই অভিযানে নিহতের সংখ্যা একশ ছাড়িয়ে এখন ১১৭ জনে দাঁড়িয়েছে। গ্রেফতারের সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। সারাদেশ�� প্রায় দশ হাজার সন্দেহভাজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করার কথা পুলিশ বলছে। তবে অভিযানে নিহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও তা থামছে না। অপরাধ বিজ্ঞানীদের অনেকে মনে করেন, 'বন্দুকযুদ্ধ', 'ক্রসফায়ার' বা 'এনকাউন্টার' এ ধরণের ব্যবস্থায় সাময়িকভাবে লাভ হচ্ছে বলে মনে হতে পারে। কিন্তু অপরাধ দমনে স্থায়ীভাবে সেভাবে প্রভাব ফেলবে না। আরো পড়ুন: 'মাদক ব্যবসার চেয়ে ক্রসফায়ারে হত্যা বড় অপরাধ' বাংলাদেশে যেভাবে চলছে মাদক বিরোধী অভিযান ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরির চেষ্টা? মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ ও বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন, নির্বাচনে আগে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে একটা ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করার লক্ষ্য নিয়ে এই অভিযান চালাচ্ছে বলে তাঁর ধারণা। ইয়াবার ব্যবহার বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ তৈরি করেছে। "মাদকের সাথে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির মতো অনেক অপরাধ জড়িত। অবাধে মাদকের ব্যবহার দেশব্যাপী এতটাই উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে যে এর প্রভাবে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে সরকারকে সমালোচনায় পড়তে হচ্ছে। সেকারণে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরকার নির্বাচনের আগে একটা ক্লিন ভাবমূর্তি তৈরির টার্গেট থেকে মাদকের বিরুদ্ধের এ ধরণের অভিযান চালাচ্ছে।" আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো এবং সরকারের অনেকে বলছেন যে, এই অভিযানে ব্যাপক জনসমর্থন তারা পাচ্ছেন। তবে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন অপরাধ বিজ্ঞানী সুব্রত ব্যাণার্জি মনে করেন, "এ ধরণের অভিযান সমাজের ক্ষুদ্র পর্যায়ে কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে এবং সমাজের সেই অংশ সাময়িকভাবে সমর্থন করতে পারে।" কিন্তু সমাজের বৃহত্তর অংশ নেতিবাচক ভাবেই দেখবে বলে তাঁর ধারণা। 'কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা সরকারের জন্য নেতিবাচক হবে' মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বিষয়টাকে ব্যাখ্যা করছেন একটু অন্যভাবে। তাঁর মতে, "সমাজে যখন অপরাধ ব্যাপকহারে বেড়ে যায় এবং এর কোন প্রতিকার হয় না। তখন সাধারণ মানুষ তাৎক্ষণিকভাবেই অপরাধীর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত কোন পদক্ষেপে খুশি হয়।" "এমন পরিস্থিতির কারণেই এখন মাদক বিরোধী অভিযানে হতাহতের ঘটনায় সমাজের একটা অংশ সমর্থন করছে বলে মনে হচ্ছে। সমাজের এই দিক বিবেচনা করলেও দিনের শেষে কথিত বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা সরকারের জন্য নেতিবাচক হবে।" অন্যদিকে, যদিও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো সন্দেহভাজনদের নিহত হওয়ার ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে তাদের উপর গুলির পর পাল্টা গুলি চালানোর তাদের যুক্তি দিচ্ছে। আর প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমোদনসহ আইনগত ভিত্তি থাকার কথাও তারা বলছে। সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে পারে? তবে অপরাধ বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, কথিত বন্দুকযুদ্ধ এবং নিহত হওয়ার ঘটনা লম্বা সময় ধরে অব্যাহত থাকলে, তখন মানবাধিকার প্রশ্নে সরকারকে নেতিবাচক পরিস্থিতিতে পড়তে হবে। সহযোগী অধ্যাপক সুব্রত ব্যাণার্জি বলেছেন, "অপরাধ বিজ্ঞান বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে কোনভাবে সমর্থন করেনা। এখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় আসবেই। এছাড়া এই অভিযানে যারা নিহত হয়েছে, তাদের পরিচয় যতটুকু সংবাদ মাধ্যমে এসেছে। তাতে পাতি ব্যবসায়ীরাই নিহত হচ্ছে বা ধরা পড়ছে। রাঘব-বোয়ালরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।" মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম মনে করেন, "লম্বা সময় ধরে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটলে তখন অভিযানে পরিচালনাকারীদের অনেকের রাজনৈতিকসহ অনেকরকম উদ্দেশ্য কাজ করে। সেদিকে এগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকেও সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে পারে।" তিনি মনে করেন, ফিলিপিন্স, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে এ ধরনের অভিযানে টেকসই কোন সমাধান হয়নি।এই দেশগুলো বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনেক প্রশ্ন উঠেছিল। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: কোন্‌ তালিকার ভিত্তিতে চলছে মাদকবিরোধী অভিযান? মাদক বিরোধী অভিযান নিয়ে নানা প্রশ্নে র‍্যাব কী বলছে মাদকবিরোধী অভিযান: প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি যেভাবে শুরু হলো মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান মাদক বিরোধী অভিযানে পাচারের বিরুদ্ধে কতটা নজর দেয়া হচ্ছে? বাংলাদেশে অবৈধ মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে র‍্যাব-পুলিশের অভিযানে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ঢাকাসহ দেশটির বিভিন্ন জায়গায় আরও অন্তত ১৪জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। +text: ফিনিশ প্রধানমন্ত্রী সান্না মারিনের সাথে আভা মার্টো (বাঁয়ে) কিন্তু সে দেশের প্রধানমন্ত্রী সান্না মারিন লিঙ্গ-সমতার লড়াইকে আরও একধাপ সামনে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, এবং ১৬ বছরের এক তরুণীকে একদিনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে দিয়েছেন। ফিনল্যান্ডের 'একদিনের প্রধানমন্ত্রী' হিসেবে তরুণী আভা মার্টো নতুন কোন আইন তৈরি করতে পারবেন না। কিন্তু অন্যদিনের মতোই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি ফিনিশ রাজনীতিবিদদের সাথে বৈঠক করেন। বিশেষভাবে প্রযুক্তিখাতে নারীদের অধিকার নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেন। মেয়ে শিশুদের নিয়ে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক দিবসকে সামনে রেখে ফিনল্যান্ডে এই ক্ষমতার হাতবদল ঘটে। কন্যা শিশুদের অধিকার তুলে ধরতে জাতিসংঘ প্রতিবছর ১১ই অক্টোবর সারা বিশ্বে এই দিনটি পালন করে থাকে। ফিনল্যান্ড এ নিয়ে গত চার বছর ধরে 'গার্লস টেকওভার' নামে এক আন্তর্জাতিক কর্মসূচি পালন করে আসছে। এই কর্মসূচিতে সারা বিশ্বের কিশোরী ও তরুণীরা বিভিন্ন দেশে রাজনীতি, ব্যবসা এবং অন্যান্য খাতের প্রধান হিসেবে একদিনের জন্য দায়িত্ব পালন করে। ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বক্তব্য রাখছে আভা মার্টো আরও পড়তে পারেন: চলতি বছর মেয়ের জন্য ডিজিটাল দক্ষতা এবং প্রযুক্তিখাতে সুযোগসুবিধা বৃদ্ধির ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। এই কর্মসূচিতে কেনিয়া, পেরু, সুদান এবং ভিয়েতনাম থেকে মেয়েদেরকে বাছাই করা হয়েছে। বুধবার এ নিয়ে এক বৈঠকে ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী আভা মার্টো বলেন, "এই কাজ নিয়ে আজ কথা বলতে পেরে আমি খুবই খুশি। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি, আমাকে যে একথা বলতে হচ্ছে তা আমি মোটেও বলতে চাই না। গার্লস টেকওভার আন্দোলন হচ্ছে, সেটাও হওয়া উচিত না।" "কারণ, বাস্তবতা হলো আমরা এখনও লিঙ্গ-সমতা অর্জন করতে পারিনি। বিশ্বের কোথাও এটা হতে পারেনি। এক্ষেত্রে আমাদের অনেক অগ্রগতি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এখনও আরও অনেক কাজ বাকি রয়ে গেছে।" প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আভা মার্টোর দায়িত্ব ছিল মন্ত্রীদের সাথে বৈঠক করা এই টিনএজার অল্প বয়স থেকেই পরিবেশ এবং মানবাধিকার সংক্রান্ত আন্দোলনের সাথে যুক্ত রয়েছে। বুধবার ওই বিশেষ দিনে আভা মার্টোর শেষ কাজ ছিল হবে প্রধানমন্ত্রী মারিনের সাথে বৈঠক করে তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করা এবং প্রযুক্তিখাতে লিঙ্গ-সমতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বের এই সাময়িক হাতবদলের আগে সান্না মারিন এক ভাষণে প্রযুক্তিখাতে সবার সমান অধিকারের গুরুত্ব তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী সান্না মারিন, ৩৪ বছর বয়সেই ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী "প্রযুক্তির সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে দেশে দ��শে, এবং দেশের মধ্যে যেন কোন বিভেদ সৃষ্টি না হয়," ভাষণে মন্তব্য করেন তিনি। গত বছর সারা বিশ্বে লিঙ্গ-সমতার ওপর বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম যে তালিকা তৈরি করেছে, সেই তালিকায় ফিনল্যান্ডের অবস্থান ছিল তৃতীয়। মিজ মারিনও ফিনল্যান্ডে গত বছরের নির্বাচনে জিতে বিশ্বে সবচেয়ে কম বয়সী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ওই সময় তার বয়স ছিল ৩৪ বছর। তার নেতৃত্বাধীন জোট সরকারে শরিক দল রয়েছে মোট চারটি - তার মধ্যে তিনটি দলের প্রধানই হলেন নারী। বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: নারী-পুরুষের সমতার ক্ষেত্রে ফিনল্যান্ডকে প্রায়ই আদর্শ উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়। +text: মিস ফারাহানা তার বক্তব্যের শুরুতেই যখন বলেন যে এই সংসদ জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, তখন সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা ব্যাপক শোরগোল শুরু করেন। পর্যেবক্ষকরা বলছেন, বহু বছর ধরে বাংলাদেশের সংসদে এ ধরণের চিত্র অনুপস্থিত। বিশেষ করে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি বিতর্কিত নির্বাচনের পর বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে কার্যত কোন বিরোধী দল ছিলনা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহিউদ্দিন আহমদ বলছেন, এবার বিএনপির কয়েকজন সদস্য সংসদে থাকায় সংসদ ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহিউদ্দিন আহমদ। মি: আহমদ বলেন, "এতোদিন তো আমরা জানতাম বা বলাবলি হতো যে গৃহপালিত বিরোধী দল। এবার বিএনপির ছয়জন যোগ দেয়াতে এরা একটা মাঠের প্রকৃত বিরোধী দল এদের পারসেপশান আছে। অল্প কয়েকজন সদস্যও যে বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারেন এবং চাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনতে পারেন, সেটার আমরা প্রমাণ দেখলাম।" বিএনপির এমপি রুমিন ফারহানা। বিএনপির যে দুজন সদস্য সংসদে বক্তব্য রেখে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন তাদের একজন রুমিন ফারহানা এবং অপরজন চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ। বিএনপি নেতারা এরই মধ্যে বলেছেন, সংসদে তাদের এমপিরা কথা বলতে গিয়ে যে ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছেন, সে বিষয়টি তারা সবার সামনে উন্মোচন করতে চেয়েছেন সংসদে যোগ দেবার মাধ্যমে। রুমিন ফারহানা বলছেন, এর মাধ্যমে তার ভাষায় সরকার দলীয় সদস্যদের অসহিষ্ণুতা প্রকাশ পাচ্ছে। "আমাকে লড়তে হচ্ছে ৩৪০ জন সদস্যের বিরুদ্ধে। ছয় বছর কার্যত বিরোধীদল না থাকার ফল এটাই হয়েছে যে সরকার এখন ন্যূনতম সমালোচনাও শুনতে পাচ্ছে না। সরকারি দলের সদস্যদের অসহিষ্ণুতা এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে," বলছিলেন রুমিন ফারহানা। পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, সদস্য সংখ্যা যাই হোক না কেন, বিএনপি সংসদে যোগ দেবার ফলে ভিন্ন এক সংসদ দেখা যাচ্ছে যেটি ২০১৪ সাল থেকে অনুপস্থিত ছিল। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহিউদ্দিন আহমদ আরো পড়তে পারেন: সংসদে বিএনপি: তারেকের সিদ্ধান্তে বিস্মিত তৃণমূল 'দরকার হলে পার্লামেন্টে পদত্যাগ করে বেরিয়ে আসবো' বিএনপি ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না কেন সংসদে বিএনপি দলীয় কয়েকজন যেভাবে বক্তব্য রাখছেন, সেটিকে কিভাবে দেখছেন আওয়ামী লীগ দলীয় সদস্যরা? আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত এমপি মাহবুব আরা গিনি বলেন, "কেউ যদি এসে অসত্য বলে, বিভ্রান্তিমূলক কথা বলে, সেটা প্রতিবাদ তো অন্য দল করতেই পারে। তাই না? বিরোধী দল কিন্তু আগে ছিল। জাতীয় পার্টি যেখানে মনে করেছে সেখানে সরকারের সমালোচনা করেছে। বিএনপি থাকাতে যেসব হইচই হাই-কাউ হতো সেটা বন্ধ ছিল বলে অনেকে এটাকে ইন্টারেস্টিং মনে করেন নাই।" "তারা সেসব অসত্য কথা সংসদে বলছে, এবং সেটার প্রতিবাদ হচ্ছে, তাতে হয়তো মনে হচ্ছে যে এটা হয়তো জমজমাট সংসদ হচ্ছে। অসত্য বিবৃতি দেয়া ছাড়া তারা কাজের কাজ কিছুই করছে না," বলছিলেন মাহবুব আরা গিনি। এই সংসদ সবে মাত্র মাত্র ছয়মাস অতিক্রম করেছে। বিএনপির সদস্যরা বলছেন, সামনের দিনগুলোতেও তারা দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি বারবার তুলে ধরার পাশাপাশি সরকারের অনিয়মগুলোও জোরালোভাবে তুলে ধরবেন। আরো পড়তে পারেন: মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ এক মাসের মধ্যে ধ্বংস করার আদেশ মোহাম্মদ মোরসি: মিশরের সাবেক প্রেসিডেন্টের উত্থান ও পতন '২৫টি পরিবারে আমার ৩৫টি সন্তান, একটিও নিজের নয়' সমকামী সৌদি রাজপুত্র, ইংলিশ ফুটবলার এবং প্রস্তাব বিএনপি মনোনীত সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য রুমিন ফারহানার সংসদে একটি বক্তব্য নিয়ে মূলত ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। +text: খালেদা জিয়া এখন আগামী ১৭ই ডিসেম্বর অর্থাৎ সোমবার পর্যন্ত তিনটি রিটের শুনানি মুলতবি করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানিয়েছেন, মঙ্গলবার খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন কি-না তা নিয়ে বিভক্ত রায় দেবার পর, সেটি নিয়ম অনুযায়ী প্রধান বিচারপতির কাছে যায়। সেটি প্রধান বিচারপতি আরেকটি বেঞ্চ, যাকে তৃতীয় বেঞ্চ বলা হয়, গঠন করে সেখানে পাঠান। ব্যারিস্টার কামাল জান��য়েছেন, এই তৃতীয় বেঞ্চের প্রতি মৌখিকভাবে অনাস্থা জানিয়েছেন তারা। এরপর লিখিতভাবে সেটি আদালতকে জানানো হবে। আরো পড়তে পারেন: খালেদা জিয়ার অতীত নির্বাচনের ফলাফল কেমন ছিল? খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা নিয়ে বিভক্ত আদেশ খালেদা জিয়ার মাথায় আরো যেসব মামলা ঝুলছে এর আগে একাদশ সংসদ নির্বাচনে দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া অংশগ্রহণ করতে পারবেন কি-না মঙ্গলবার তা নিয়ে বিভক্ত রায় দেয় হাইকোর্ট বেঞ্চ। ঐদিন হাইকোর্ট বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ নির্বাচন কমিশনকে খালেদা জিয়ার তিনটি আসনের মনোনয়নপত্র গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে রুল জারি করেন। খালেদা জিয়ার মনোনয়পত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয় ওই রুলে। তবে অপর বিচারপতি মোঃ ইকবাল কবির এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে রিট আবেদনগুলো খারিজ করে দেন।। দুর্নীতির মামলায় ফেব্রুয়ারি মাসের আট তারিখ থেকে কারাবন্দী রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। তবে, ফেনী-১ এবং বগুড়া ৬ ও ৭ আসনে তার পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া হয়েছিল। ডিসেম্বরের দুই তারিখে বাছাইয়ের সময় কারাদণ্ডের কারণ দেখিয়ে খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা বাতিল করে দেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এরপর নির্বাচন কমিশনে আপিল করলে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে নেয়া সিদ্ধান্তে সেই আপিল নাকচ হয়ে যায়। ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে গিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের আইনজীবীরা। বাংলাদেশে ৩০শে ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: ভাইরাল ভিডিও: যা বললেন দল থেকে বহিষ্কৃত সেই নারী টয়লেটের জন্য বাবাকে পুলিশে দিলো সাত বছরের কন্যা গঙ্গা তীরের যে ধর্ষণের ভিডিও নিয়ে ভারতে তোলপাড় বাংলাদেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার পক্ষে করা রিট আবেদনের শুনানির সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা। +text: ক্যাডির জন্য ক্রিসমাসের উপহার দুই বছরের ক্যাডির জন্য আগামী ১৪ বছরের ক্রিসমাস উপহার রেখে গেছেন তাদের বয়সী প্রতিবেশী কেন। যুক্তরাজ্যের ভেল অফ গ্লামোরগানের ব্যারি শহরে ওয়েন এবং ক্যারোলিন উইলিয়ামের কাছাকাছি একটি বাসায় গ��� দুইবছর ধরে বসবাস করতেন মি: কেন, যার বয়স ছিল আশি বছরের বেশি। তিনি একসময় গভীর সমুদ্রে ডুবুরি হিসাবে কাজ করতেন, তবে অনেক আগে অবসর নিয়েছিলেন। দুই বছরের ক্যাডি উইলিয়ামস দম্পতি জানিয়েছে, তাদের দুই বছরের কন্যা ক্যাডিকে খুব ভালোবাসতেন মি: কেন। কিছুদিন আগে তিনি মারা যান। এরপর গত সোমবার সকালে মি: কেনের মেয়ে এসে উইলিয়ামসদের দরজায় নক করেন। তখন তার হাতে ছিল উপহারের একটি বাক্স। ''তার হাতে ছিল বিশাল একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ। আমি ভেবেছিলাম তার মধ্যে হয়তো নানা আবর্জনা ভরা আছে, যা হয়তো সে আমাকে ফেলে দিতে বলবে।'' সেই মুহূর্তের বর্ণনা দিচ্ছিলেন মি: উইলিয়ামস। ''কিন্তু সে বললো, এই ব্যাগে ক্যাডির জন্য তার বাবা সমস্ত কিছু রেখে গেছেন।'' ক্যাডির জন্য প্রতিবেশী কেনের উপহার সেখানে সবগুলোই ছিল ক্যাডির জন্য ক্রিসমাসের উপহার। এসব উপহার আগামী ১৪ বছর ধরে তাকে দেয়া যাবে। এসব উপহার দেখে উইলিয়ামস পরিবার আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। ''আমি যখন সেগুলোকে ঘরের ভেতর নিয়ে এলাম, আমার স্ত্রী তখন তার মায়ের সঙ্গে ফেসটাইমে কথা বলছিলেন। উপহার দেখে আমার স্ত্রী কাঁদতে শুরু করলেন, আমিও কাঁদতে শুরু করলাম আর আমার শাশুড়িও কাঁদতে লাগলেন।'' ''এটা বর্ণনা করা আসলে খুব কঠিন, কারণ এটা ছিল একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। আমি জানি না, কতদিন ধরে তিনি এগুলো জমিয়েছেন। আমরা জানি না, তিনি কি গত দুই বছর ধরেই কিনেছেন নাকি মৃত্যুর শেষ দিনগুলোয়।'' মি: উইলিয়ামস জানিয়েছেন, তারা একটি উপহারের প্যাকেট খুলে সেখানে বই দেখতে পেয়েছেন। তবে এখনো জানেন না, বাকি উপহারগুলোতে কী রয়েছে। ''আমরা হয়তো ধারণা করতে পারি যে, সেখানে হয়তো কিছু বই রয়েছে, হয়তো তিন চারটি খেলনা রয়েছে।'' যুক্তরাজ্যের একটি পরিবার হতবাক হয়ে গেছে, যখন তারা জানতে পারে যে, কিছুদিন আগে মারা যাওয়া একজন বয়োবৃদ্ধ প্রতিবেশী তাদের ছোট্ট মেয়েটির জন্য বহু বছরের ক্রিসমাস উপহার রেখে গেছেন। +text: নাজমুল হাসান পাপন- বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি ২০১৭ সালে সর্বশেষ সংশোধিত যে গঠনতন্ত্র দেখা যায়, সেখানে সমগ্র বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নয়ন, আঞ্চলিক ও জেলা ক্রিকেটের সম্প্রসারণ এবং সারাদেশের ক্রিকেট অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করাই ক্রিকেট বোর্ডের মূল কাজ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালকরা বোর্ড সভাপতির নেতৃত্বের নানা পদে বহাল থেকে, কোচ ও অন্যান্য কোচিং স্টাফ নিয়োগ, নির্বাচক নিয়োগ ও তাদের কাজের তদারকি করে থাকেন। এছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেট পরিচালনা, ঘরোয়া ক্রিকেটের নানা নিয়ম নীতি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের সাথে সমন্বয় করে পরিবর্তন ও যথাযথ প্রয়োগের কাজ করে থাকে। এই কাজগুলো সম্পাদনের জন্য প্রতি বিসিবি নির্বাচনের পর কমিটি করা হয় ও সেসব কমিটির সভায় ক্রিকেট অপারেশন্স, গেম ডেভেলপমেন্ট, শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি থেকে শুরু করে গ্রাউন্ডস ও আম্পায়ার্স কমিটি পর্যন্ত করা গয়ে থাকে। কিন্তু সেখানে ক্রিকেটারদের মাঠের খেলায় কে কোথায় ব্যাট করবে বা অধিনায়ক বোলিং নাকি ব্যাটিং নেবেন এসব কৈফিয়তের কথা বলা নেই। ১৯শে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নাজমুল হাসান পাপনের একটি সংবাদ সম্মেলন হয় যেখানে তিনি বলেন, তিনি ম্যাচের আগে যেসব কথা শোনেন একাদশ, ব্যাটিং অর্ডার ও ম্যাচের পরিকল্পনা নিয়ে সেসব মাঠে গিয়ে পাল্টে যায়। তিনি বলেন, "সেরা একাদশ অধিনায়ক ও কোচ ঠিক করবেন সেটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নাই। আমি জানতে চাই পরিকল্পনা কী, কে কোথায় খেলছে।" মি. পাপন কিছু উদাহরণ দেন যে ঠিক কবে থেকে তিনি এসব বিষয় নিয়ে ক্ষুব্ধ, "বিশ্বকাপ থেকে শুরু হয়েছে এটা। আফগানিস্তান সিরিজে, বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচে এটা হয়েছে। যে জীবনে ওপরে খেলেনাই তাকে ওপরে খেলানো হচ্ছে।" "পাকিস্তানে টি টোয়েন্টি দেখতে গেলাম, ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন, আমাকে যেটা বলা হয়েছে সেটার সাথে কোনো মিল নেই।" নাজমুল হাসান পাপন যোগ করেন, "আমি ঠিক করছি না কিছুই, ব্যাটিং বা বোলিং নিবো এগুলো অধিনায়ক কোচ ঠিক করুক, কিন্তু আমাকে যেটা বলা হয় সেটার উল্টো যাতে না হয়।" বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের এই প্রধান নানা সময়ে মাঠের খেলা ও খেলোয়াড়দের নিয়ে মন্তব্য করে আলোচনা ও সমালোচনার কেন্দ্রে ছিলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির সাথে সাকিব আল হাসান দলে কী প্রভাব পড়ে? আজাদ মজুমদার দীর্ঘদিন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের বাইরের নানা সংবাদমাধ্যমে ক্রিকেট নিয়ে লেখালেখি করে আসছেন। তার মতে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি যেসব মন্তব্য করে থাকের মাঠের খেলা নিয়ে তার সবচেয়ে বড় প্রভাব ফেলে দলের কোচ বা ম্যানেজার স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না এটাকে মি. মজুমদার এভাবে ব্যখ্যা করেন, "যেভাবে চান সেভাবে করতে হয়, এটাকে হস্তক্ষেপ বলেন কি��বা চাওয়া পাওয়া সেটা ক্রিকেটীয় সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলে।" বিশ্বের অন্য ক্রিকেট বোর্ডে সভাপতির এমন ভূমিকা আছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "বিশ্বের কোনো দেশে এই ধরণের অনুশীলন নেই। যেহেতু বোর্ড সভাপতি তিনি চাইলে কোচ বা অধিনায়ককে তলব করতে পারেন বা কৈফিয়ত চাইতে পারেন। কিন্তু সিরিজের মাঝে প্রতিদিন যদি কৈফিয়ত চাওয়া হয় সেক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা থাকে না দলে।" এর উদাহরণ হিসেবে তিনি বারবার কোচ পরিবর্তনের কথা টানেন। "কোচিং স্টাফ দেখলেও এটা বোঝা যায়। কোচ আসছেন কোচ যাচ্ছেন। দল হিসেবে একটানা অনেকদিন খেললে সাফল্য পাওয়া যায়, যা জাতীয় দলে পাওয়া দুরূহ।" অস্ট্রেলিয়ায় ক্রিকেট বোর্ড সিনিয়র ক্রিকেটারদের সাথে বৈঠক করেই জাস্টিন ল্যাঙ্গারকে কোচের দায়িত্ব দিয়েছে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া কোচ নিয়োগ দেয়ার সময়কার বিবৃতিতে একথা উল্লেখ করে। ভারতে কোচ নিয়োগের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি প্যানেল বানানো হয়, সর্বশেষ প্যানেলে ছিলেন কপিল দেব, আনশুমান গেয়কদ ও সান্থা রঙ্গসোয়ামি। তারা ভিরাট কোহলির সাথে বসে কোচের তালিকা তৈরি ও শেষ পর্যন্ত রাভি শাস্ত্রীকে কোচের দায়িত্ব দেন। ভিরাট কোহলির মতামতকে এক্ষেত্রে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয় বলে রিপোর্ট করে ভারতের গণমাধ্যম। পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ডের ক্রিকেট বোর্ড প্রধান মূলত অন্যান্য ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের সাথে পাকিস্তানের ক্রিকেটের একটা সংযোগ স্থাপনের কাজ করে থাকেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের গঠনতন্ত্রের কার্যপরিধি অনুযায়ী আন্তর্জাতিক কোনো ম্যাচ যেখানে বাংলাদেশ খেলছে সেখানে ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি বা কোনো পরিচালক ম্যাচে কী পরিকল্পনা নেয়া হবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত বা হস্তক্ষেপ করার কথা বলা নেই। +text: এফডিসিতে ডাবিং এর কাজ চলছে সিনেমার ভিলেন চরিত্রে অভিনয় করেছেন নায়ক অমিত হাসান। সিনেমার শুটিং শেষ। এখন ডাবিং এ অংশ নিচ্ছেন তিনি। কিন্তু এই একই সিনেমায় অন্য আরেকজন অভিনেতা শুটিং শেষে দেশের বাইরে থাকায় তার হয়ে কণ্ঠ বা ডাবিং করেছেন একজন পেশাদার ডাবিং শিল্পী। একটি সিনেমার মূল শুটিয়ের পর ডাবিং এর অংশটি অতি গুরুত্বপূর্ণ। কিভাবে একজন ডাবিং শিল্পী পর্দায় অভিনয় না করে শুধু দৃশ্য দেখে ডাবিং করেন? বাংলাদেশে দুই হাজারের বেশি সিনেমায় ডাবিং করেছেন আনোয়ার শাহী। তিনি বলছিলেন পর্দার অভিনেতার সমস্ত আচরণ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হয় তাকে। মি. শাহী বলছিলেন "এটা আসলেই অনেক কঠিন একটা কাজ। অন্যের ইমোশন, অ্যাকশন নিজের মধ্যে এনে সেইভাবে কাজ করতে হয়। এক্ষেত্রে পরিমিতি বোধটা অনেক প্রয়োজন"। বাংলা সিনেমার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রায় প্রতিটি সিনেমায় ডাবিং শিল্পীর দরকার পড়ে। কখনো মুল চরিত্রের জন্য কখনো আবার পার্শ্বচরিত্র গুলোর জন্য। শুধু সিনেমায় নয়। বাংলাদেশের টেলিভিশন গুলোতে এখন বিদেশি সিরিয়ালের জনপ্রিয়তা তৈরি হয়েছে। আর এটার বড় কারণ বাংলা ডাবিং। আগে এই বাংলা ডাবিং পাশের দেশ ভারতের কলকাতা থেকে করে আনা হলেও এখন অনেক সিরিয়ালের ডাবিং হচ্ছে দেশেই। অভিনয় শিল্পী দীপক সুমন। এবং সেখানে কণ্ঠ দিচ্ছেন অনেক অভিনয় শিল্পী। জনপ্রিয় টিভি সিরিয়াল সুলতান সুলেমানের - সুলেমান চরিত্রের কণ্ঠ দিয়েছেন অভিনয় শিল্পী দীপক সুমন। মি.সুমন বলছিলেন, ডাবিং শিল্পীদের প্রথমত অভিনয় শিল্পী হতে হবে। তিনি বলছিলেন "এখন যদি কেউ ডাবিং শিল্পী হিসেবে কাজ করতে চায় তাহলে থিয়েটারটা তাকে করতেই হবে। কারণ বাংলাদেশে যেহেতু ডাবিং শেখার সেই অর্থে কোন সুযোগ। তবে থিয়েটারে অভিনয়ের সাথে ডাবিং এর অভিনয়ের পার্থক্য আছে সেটাও খেয়াল রাখতে হবে"। বাংলাদেশ ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কপোরেশনের একজন সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার সোহেল আহমেদ, যাকে প্রতিটি সিনেমার ডাবিং এর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকতে হয়। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় থেকে তিনি বলছিলেন, সিনেমায় নতুন যারা কাজ করেন তারা অনেকেই প্রথমে ডাবিংটা পারেন না। আবার স্টার অভিনেতাদের ব্যস্ততা বা অন্যান্য কারণে ডাবিং শিল্পীরা কাজটা করে দেন। "অনেক শিল্পী আছেন যারা প্রথম থেকেই ডাবিং করেন না। তার হয়ে অন্য আরেকজন করে দেন। দর্শকও কোনোদিন বুঝতে পারেনা যে কণ্ঠটা তার না। তবে মাঝখান থেকে যদি সে চায় তাহলে দর্শক একটা ধাক্কা খায়" - বলছিলেন মি. আহমেদ। সিনেমার ডাবিং করছেন আনোয়ার শাহী তবে পর্দার পেছনে কাজ করা এই মানুষগুলোর একটা আক্ষেপের জায়গা রয়েছে। একটি চরিত্রের কণ্ঠ দিয়ে চরিত্র টিকে তারা জনপ্রিয় করছেন ঠিকই কিন্তু নিজেরা রয়ে যাচ্ছেন পর্দার আড়ালেই। দীপক সুমন বলছিলেন একজন অভিনয় শিল্পী হিসেবে অন্তত তাদের নামটা দেয়া উচিত যাতে করে তাদের কাজের স্বীকৃতি মেলে। "সুলতান সুলেমানে তিন বছর ধরে প্রায় ৪০ জনের মত কাজ করছে। অনেক জনপ্রিয় চরিত্রে কণ্ঠ দিচ্ছে। কিন্তু দর্শক কিন্তু জানে না তাদের নাম কি। এই শিল্পীদের নামটা প্রচার করা উচিত। কারণ একজন শিল্পীর কাছে অর্থের স্বীকৃতির চেয়ে এই স্বীকৃতি অনেক বড়" বলছিলেন মি. সুমন। ডাবিং সিরিয়ালের ক্ষেত্রে ডাবিং শিল্পীদের নাম উল্লেখ না করার কারণ হিসেবে কর্তৃপক্ষ বলছেন, এটা করা হলে বিদেশি সিরিয়াল নেয়ার চুক্তি ভঙ্গ করা হয়। আর সিনেমার ক্ষেত্রে- পরিচালকের অনুমতি ও অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সম্মতির ভিত্তিতেই ডাবিং শিল্পীরা কাজ করে থাকেন-যেখানে নামের বিষয়টা উল্লেখ থাকবে না সেটা তারা আগে জেনেই কাজটা হাতে নেন। ঢাকার একটি ডাবিং থিয়েটারে একটি সিনেমার ডাবিং এর কাজ হচ্ছে। +text: গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে এসি বিক্রির সংখ্যা অনেক বেড়েছে ''টেকনিশিয়ান চালু করেই দেখেন, ঘড়ঘড় শব্দ হচ্ছে। তিনি সেটা খুলে মেরামতের পর দেখতে পান, যন্ত্রটি জ্যাম হয়ে আছে। তিনি আমাদের জানালেন, এভাবে খানিকক্ষণ চললেই এসিটি বিস্ফোরিত হতে পারতো।'' বলছেন মিসেস চৌধুরী। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে এয়ার কন্ডিশনার বা এসির ব্যবহার বাড়ছে, তেমনি প্রায়ই এসি বিস্ফোরণের ঘটনার কথাও শোনা যাচ্ছে। দমকল বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা ও গাজীপুর মিলিয়ে ২০১৯ সালেই অন্তত পাঁচটি এসি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন অন্তত ২২জন। কেন ঘটছে এসি দুর্ঘটনা? বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক অলোক কুমার মজুমদার বিবিসি বাংলাকে বলছেন, এসি দুর্ঘটনার পেছনে তিন চারটি কারণ রয়েছে। ''অনেকে রুমের লোড অনুপাতে এসি ব্যবহার করেন না। ফলে এসিটি অনেকক্ষণ ধরে চলতে হয়, সেই সঙ্গে অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়। নিম্নমানের এসি কিনলে সেগুলোর ভেতরে ফ্যান, তারের, বিদ্যুতের ব্যবস্থাগুলো ঠিক থাকে না। ফলে সেখানেও কারিগরি ক্রুটি দেখা যায়, যা অনেক সময় আগুনের সূত্রপাত করতে পারে।'' তিনি বলছেন, ''এসি দুর্ঘটনার আরেকটি বড় কারণ রক্ষণাবেক্ষণের অভাব। ফলে কারিগরি ক্রুটির কারণে এসিতে আগুন ধরে যেতে পারে বা এসির গ্যাসে আগুন লেগে সেটি ঘরে ছড়িয়ে পড়তে পারে।'' অনেক সময় উইন্ডো এসির সামনে জানালা বা দরজার পর্দা চলে এলে বাতাস চলাচলে বাধাগ্���স্ত হয়। সেটিও এসিকে গরম করে তুলতে পারে বলে তিনি জানান। আরো পড়ুন: ভারতে সরকার কেন এসি-র তাপমাত্রাও বেঁধে দিচ্ছে তীব্র গরমের মধ্যে ঢাকার এসি-র বাজার খালি আপনার বিদ্যুৎ বিল কি খুব বেশি? কমানোর ৭টি উপায় বিদ্যুৎ থেকে বাসা বাড়িতে আগুন লাগছে কেন? সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসি কেনার সময় ভালো করে যাচাইবাছাই করে দেখা উচিত নিম্নমানের গ্যাস আর প্রতিযোগিতার বাজার ঢাকার গুলশানে একটি এসি সরবরাহ এবং সার্ভিসিংয়ের প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন দুলাল দাস। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, ''বর্তমানের এসিগুলোয় যে গ্যাস ব্যবহার করা হয়, সেই গ্যাসে সহজে আগুন ধরে যায়। ফলে কোন কারণে সেটি লিক হয়ে জমে থাকলে, সেখানে বৈদ্যুতিক কারণে আগুনের স্ফুলিঙ্গ তৈরি হলে বা ম্যাচের কাঠি জ্বালানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে।'' তিনি জানান, দশবছর আগের তুলনায় বর্তমানে বাংলাদেশে এসির ব্যবহারের প্রবণতা অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে প্রচণ্ড গরমের কারণে এই বছরে অনেক বেশি এসি বিক্রি হয়েছে। '' প্রতিযোগিতার বাজারের কারণে অনেকে চীন থেকে অত্যন্ত কম মূল্যে কিন্তু নিম্নমানের জিনিস দিয়ে তৈরি এসি এনে বাংলাদেশের বাজারে বিক্রি করছে। এমনকি অনেকে এসব এসির গায়ে নামী ব্রান্ডের স্টিকার লাগিয়ে বিক্রি করছে। এসব এসির গুণগত মান খারাপ হওয়ায় সহজেই দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারে"। দুলাল দাস বলছেন, দামী এই যন্ত্রটি কেনার আগে বিশেষ সতর্ক হওয়া উচিত, যাতে নকল কিনে ঠকতে না হয়। এজন্য ব্র্যান্ডগুলোর নিজস্ব শোরুম থেকে কেনাই ভালো বলে তিনি পরামর্শ দেন। এসি দুর্ঘটনার যেসব সম্ভাব্য কারণ জানা যাচ্ছে: বজ্রপাত বা বৃষ্টির সময়ে এসি চালানো ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ ভালো আর্থিং ব্যবস্থা না থাকলে এটিও এসির দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসি স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত জরুরি, যা বাংলাদেশে ততটা গুরুত্ব দেয়া হয় না। যেভাবে দুর্ঘটনা এড়ানো যেতে পারে: বুয়েটের অধ্যাপক অলোক কুমার মজুমদার বলছেন, অন্য যেকোনো বৈদ্যুতিক যন্ত্রের মতো এসিরও বিশেষ যত্ন নেয়ার দরকার আছে। তাহলে একদিকে যন্ত্রটি যেমন ভালো থাকবে, তেমনি দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে। '' ''আমাদের দেশে এসির রক্ষণাবেক্ষণে খুব অবহেলা করা হয়। কিন্তু মনে রাখা দরকার, এই যন্ত্রটি কিন্তু বাসার অন্যসব যন্ত্রের মতো নয়। এটির জন্য রক্ষণাবেক্ষণ খুবই জরুরি। প্রতিমা��ে ফিল্টার পরিষ্কার রাখা, বছরে একবার অন্তত পুরো যন্ত্রটির সার্ভিসিং করানো, আউটডোর ইউনিট পরিষ্কার রাখতে হবে।' এসি সার্ভিসিং এক্সপার্ট দুলাল দাস বলছেন, ''বছরে অন্তত একবার পেশাদার টেকনিশিয়ানের সাহায্যে এসির সার্ভিসিং করানো উচিত। বিশেষ করে শীতের সময় দীর্ঘ কয়েকমাস বন্ধ থাকার পরে গরমের আগে আবার চালু করার আগে অবশ্যই সার্ভিসিং করে নেয়া উচিত।'' বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসি দুর্ঘটনা এড়াতে কয়েকটি বিষয়ের দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া উচিত। এসি এক্সপার্ট দুলাল দাস বলছেন, একনাগাড়ে আট ঘণ্টার বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়। এছাড়া আউটডোর মেশিন এমন স্থানে বসাতে হবে, যেন পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করতে পারে। শীত শেষে গরম শুরুর সময় এসি চালু করার আগে আগে টেকনিশিয়ান ডেকে এসে মেরামতের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা ইলোরা চৌধুরী। সেটাই তাদের বড় একটি দুর্ঘটনা থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। +text: বিজ্ঞানীরা আশংকা করেন করোনাভাইরাসের মত মহামারি আগামীতে আরো হবে প্রাকৃতিক জগতে মানুষের অনুপ্রবেশ সেই প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করছে। এ কথা বলছেন সারা বিশ্বের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা - যারা কোথায় এবং কীভাবে নতুন রোগের বিস্তার ঘটে তা নিয়ে গবেষণা করেন। তাদের এই প্রয়াসের অংশ হিসেবে তারা একটি পদ্ধতি তৈরি করেছেন যাতে এসব রোগ বিস্তারে প্রক্রিয়ায় কী কী সাদৃশ্য দেখা যায় –তা চিহ্নিত করা সম্ভব, যাকে বলে প্যাটার্ন রিকগনিশন। এ পদ্ধতির ফলে পূর্বাভাস দেয়া সম্ভব যে কোন কোন বন্যপ্রাণী মানুষের জন্য সবচেযে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। যুক্তরাজ্যের লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এই গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তবে এটি ভবিষ্যতের কোন রোগবিস্তারের জন্য প্রস্তুত থাকার যে বৈশ্বিক প্রয়াস, তার অংশ। রেমডেসিভির ওষুধের প্রচারণা নিয়ে সতর্ক হবার আহ্বান বিশেষজ্ঞদের ব্যবহৃত মাস্ক-গ্লাভস যত্রতত্র ফেলে যে ক্ষতি করছেন বাড়িতে বসে কোভিড-১৯ চিকিৎসা: যে ছয়টি বিষয় মনে রাখবেন যেসব ভুয়া স্বাস্থ্য পরামর্শ এড়িয়ে চলবেন নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে বাদুড় থেকে একাধিক ভাইরাসজনিত রোগ মানুষের মধ্যে ছড়িয়েছে “আমরা পাঁচটি বুলেট থেকে বেঁচে গেছি” "গত ২০ বছরে আমরা ৬টি বড় বড় হুমকির সম্মুখীন হয়েছি – সার্স, মার্স, ইবোলা, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা, এবং সোয়াইন ফ্লু" - বলছি���েন লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ম্যাথিউ বেলিস। “আমরা পাঁচটি বুলেট এড়াতে পেরেছি, কিন্তু ছয় নম্বরটার হাত থেকে বাঁচতে পারিনি” – বিবিসিকে বলেন অধ্যাপক বেলিস। সবচেয়ে বড় কথা, তিনি বলছেন - এটাই যে আমাদের সম্মুখীন হওয়া শেষ মহামারি, তা মোটেও নয়। ‍“আমাদের বন্যপ্রাণী থেকে মানবদেহে আসা রোগগুলোর দিকে আরো গভীরভাবে নজর দিতে হবে”, বলেন অধ্যাপক বেলিস। এ পরীক্ষারই অংশ হিসেবে তিনি এবং তার সহযোগীরা এমন একটি প্যাটার্ন-রিকগনিশন পদ্ধতি তৈরি করেছেন, যার সাহায্যে আমরা বন্যপ্রাণী থেকে আসা যত রোগের কথা জানি তার সবগুলোর উপাত্ত অনুসন্ধান করে দেখা যাবে। এ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা হাজার হাজার ব্যাকটেরিয়া, প্যারাসাইট বা পরজীবী এবং ভাইরাস সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। অধ্যাপক বেলিসের পদ্ধতি দিয়ে এই অণুজীবগুলো যেসব প্রজাতির প্রাণীকে সংক্রমিত করতে পারে - তার মধ্যে লুকিয়ে থাকা সূত্রগুলো চিহ্নিত করা যাবে। এই সূত্রগুলো দিয়ে আবার এটাও বোঝা যাবে যে কোন কোন অণুজীব মানুষের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে। যদি এভাবে কোন প্যাথোজেন, অর্থাৎ রোগ-সৃষ্টিকারী অণুজীব চিহ্নিত হয় – তাহলে বিজ্ঞানীরা কোন রোগের প্রাদুর্ভাব হবার আগেই তা ঠেকানোর উপায় উদ্ভাবনের গবেষণা চালাতে পারবেন। অধ্যাপক বেলিস বলছেন, ঠিক কোন রোগ মহামারির চেহারা নিতে পারে তার গবেষণা সম্পূর্ণ অন্য ব্যাপার - কিন্তু আমরা এই প্রথম পদক্ষেপটির ব্যাপারে অগ্রগতি ঘটাতে পেরেছি। বনভূমির পাশে পশুপালনের খামার হতে পারে নতুন রোগের উৎস লকডাউনের শিক্ষা বিজ্ঞানীরা একমত যে বন ধ্বংস এবং বন্যপ্রাণীর আবাসসভূমিতে মানুষের ঢুকে পড়ার ফলে এখন ঘন ঘন এবং সহজেই প্রাণী থেকে মানুষে রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক কেট জোনস বলছেন, মানুষ যেভাবে ইকোসিস্টেমকে বদলে দিয়ে কৃষি বা বৃক্ষরোপণ করছে, তাতে জীববৈচিত্র কমে যাচ্ছে এবং মানুষের নানা সংক্রমণে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বাড়ছে বলেই তারা তথ্যপ্রমাণ পাচ্ছেন। তিনি বলছেন, অবশ্য সব রোগের ক্ষেত্রেই এমন হচ্ছে তা নয়। "কিন্তু কিছু বন্যপ্রাণী যারা মানুষের উৎপাতের ব্যাপারে সবচেয়ে সহিষ্ণু – যেমন কিছু প্রজাতির ইঁদুর – তারা অনেক সময় রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীব ছড়ানোর ক্ষেত্রে বড় ভুমিকা রাখছে।" “ফলে জীববৈচিত্র হারানোর ফলে এমন পরিবেশ তৈরি হচ্ছে যাতে মানুষ ও বন্যপ্রাণীর ঝুঁকিপূর্ণ সংস্পর্শ বেড়ে যাচ্ছে। তাতে কিছু কিছু ভাইরাস, ব্যকটেরিয়া বা প্যারাসাইটের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে।‍“ এ ক্ষেত্রে কিছু রোগ বিস্তারের কথা বলা যায় - যেখানে মানুষ এবং বন্যপ্রাণীর ‘মধ্যবর্তী পর্ব’ বা ইন্টারফেসের এই যে ঝুঁকি - তা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। মানুষ আর বন্যপ্রাণীর মাঝখানের 'ইন্টারফেস' মালয়েশিয়ায় ১৯৯৯ সালে নিপাহ ভাইরাসের এক প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল। এটি একটি ভাইরাসজনিত সংক্রমণ যা এক ধরণের বাদুড়ের মধ্যে দিয়ে বাহিত হয়। এই সংক্রমণ ছড়িয়েছিল বনভূমির প্রান্তে থাকার একটি শূকরের খামারে। ফলের গাছে এসে জঙ্গলের বাদুড় ফল খেতো। তাদের আধা-খাওয়া ফল মাটিতে পড়লে তা খেতো শূকর। ওই ফলে লেগে থাকতো বাদুড়ের মুখের লালা – যা থেকে শূকরের দেহে সংক্রমণ হয়। এই সংক্রমিত শূকরের দেখাশোনা করতো খামারের ২৫০ জনেরও বেশি কর্মী। ফলে তাদের দেহেও দেখা দিল ভাইরাস সংক্রমণ। তাদের মধ্যে ১০০ জনেরও বেশি লোকের মৃত্যু হয়। কোভিড-১৯ ভাইরাসে মৃত্যুর হার সম্পর্কে এখনো গবেষণা চলছে। তবে অনুমান করা হয়, যত লোক করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয় তার প্রায় ১ শতাংশ মারা যায়। নিপাহ ভাইরাসের ক্ষেত্রে মারা যায় সংক্রমিতদের ৪০ থেকে ৭৫ শতাংশ। লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয় ও কেনিয়ার আন্তর্জাতিক গবাদিপশু গবেষণা কেন্দ্রের অধ্যাপক এরিক ফেভরে বলছেন, যে সব এলাকায় রোগের প্রাদুর্ভাবের উচ্চ ঝুঁকি সেসব জায়গায় গবেষকদের সার্বক্ষণিক নজর রাখতে হবে। বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল এবং ফার্মের মতো মানুষের কর্মকান্ড – এ দুয়ের মধ্যে যদি এরকম কোন ইন্টারফেসের অস্তিত্ব থাকে, তাহলে সেটা হয়ে উঠতে পারে নতুন রোগ ছড়ানোর হটস্পট। যেমন বনভূমির কাছে একটি পশুপালনের ফার্ম, বা যেসব বাজারে প্রাণী বেচাকেনা হয় – এগেুলোই হচ্ছে এমন জায়গা, যেখানে মানুষ আর বন্যপ্রাণীর আবাসস্থলের পার্থক্য ঝাপসা হয়ে যায়। এগুলো থেকেই রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি। অধ্যাপক ফেভরে বলছেন, “আমাদের এরকম ইন্টারফেস কোথাও তৈরি হচ্ছে কিনা তার ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখতে হবে, এবং অস্বাভাবিক কোন কিছু দেখলেই তার বাপারে পদক্ষেপ নেবার ব্যবস্থা থাকতে হবে।“ মানব বসতি আছে এমন জায়গায় প্রতি বছর তিন থেকে চার বার নতুন রোগের উদ্ভব হয়। শুধু এশিয়া বা আফ্রিকা নয়, ইউরোপ বা মার্কিন যুক্তর��ষ্ট্রেও এটা হচ্ছে।“ “নতুন রোগের ব্যাপারে নজরদারির গুরুত্ব এখন আরো বেড়ে যাচ্ছে। আমরা এখন পৃথিবীতে মহামারি ছড়ানোর জন্য প্রায় আদর্শ পরিবেশ সৃষ্টি করে ফেলেছি” – বলছেন অধ্যাপক বেলিস। অধ্যাপক ফেভরেও এ ব্যাপারে একমত। তার কথা – করোনাভাইরাসের মতো ঘটনা আগামীতে বার বার ঘটতে পারে। তিনি বলছেন, এ থেকে আমাদের শিক্ষা নেবার আছে যে কীভাবে মানুয়ের কর্মকান্ড প্রাকৃতিক জগতের ওপর প্রভাব ফেলছে । বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষ যে সভ্যতা গড়ে তুলেছে তাতে বন্যপ্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে রোগ সংক্রমণ এবং তার পর তা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়া – এর ‌‘নিখুঁত ব্যবস্থা’ করে রাখা আছে। +text: শেখ নাহিয়ান বিন মুবারক আল নাহিয়ানের আইনজীবীরা বলেছেন এই অভিযোগে তিনি ''বিস্মিত এবং মর্মাহত'' হে উৎসবের সভাপতি, ক্যারোলাইন মিশেল বলেছেন শেখ নাহিয়ান বিন মুবারক আল নাহিয়ান দেশটির সহিষ্ণুতা বিষয়ক মন্ত্রীর (মিনিস্টার ফর টলারেন্স) পদে যতদিন থাকছেন, ততদিন তারা আবুধাবিতে এই উৎসবের আয়োজন করা থেকে বিরত থাকবেন। তাদের কর্মী কেইটলিন ম্যাকনামারা দাবি করেছেন শেখ নাহিয়ান এবছরের গোড়ার দিকে তার ওপর যৌন হামলা চালান এবং তিনি এর জন্য আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন। এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ৬৯ বছর বয়সী শেখ নাহিয়ান। লন্ডনের দ্যা সানডে টাইমস পত্রিকাকে ৩২ বছর বয়সী মিস ম্যাকনামারা জানিয়েছেন, তিনি যে হামলার অভিযোগ করছেন সেটি ঘটেছিল ১৪ই ফেব্রুয়ারি, প্রত্যন্ত অঞ্চলে একটি ব্যক্তিগত মালিকানার দ্বীপে এক আবাসিক অট্টালিকায়। আবুধাবিতে এবছর প্রথমবারের মত যে হে সাহিত্য ফেস্টিভ্যাল আয়োজন করা হয়েছিল, ওই ঘটনার ১১ দিন পর তার উদ্বোধন হবার কথা ছিল। মিস ম্যাকনামারা ভেবেছিলেন ওই উৎসব নিয়ে কথা বলার জন্য তাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। মিস ম্যাকনামারা বলেন তার ওপর নির্যাতনের ওই ঘটনার পরপরই তিনি বিষয়টি তার চাকুরিদাতা প্রতিষ্ঠান এবং দেশটিতে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের জানিয়েছিলেন। এবং ব্রিটেনে করোনাভাইরাস লকডাউন প্রত্যাহারের পর তিনি কেন্ট এলাকার পুলিশ স্টেশনে গিয়েও ঘটনাটি জানান। আরও পড়তে পারেন: সানডে টাইমস পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, ব্রিটেনের সরকারি কৌঁসুলি বিভাগ (ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিস) এই মামলা নেবে কি না, তা জানার জন্য মিস ম্যাকনামারা অপেক্ষা করছেন। তিনি বলেন তিনি তার ব্যক্তিগত পরিচয�� গোপন রাখার অধিকার বিসর্জন দিয়ে এই ঘটনার কথা সবার সামনে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, কারণ তার ভাষ্য অনুযায়ী: "আমি মনে করেছি আমার হারাবার কিছু নেই।'' ''আমি এটা করতে চেয়েছি, কারণ তার মত ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা কী করতে পারেন সেটা আমি জানাতে চাই। তারা মনে করেন তারা এধরনের কাজ করতে পারেন এবং পার পেয়ে যেতে পারেন,'' তিনি সংবাদপত্রে দেয়া সাক্ষাৎকারে একথা বলেন। ''তার বাসভবন যেভাবে সাজানো তা থেকে এটা স্পষ্ট যে আমি প্রথম নারী নই, এবং আমি শেষ নারীও নই। ওই ঘটনা আমার ওপর বিশালভাবে মানসিক ও শারীরিক প্রভাব ফেলেছে। কিন্তু তার জন্য হয়ত এটা নিছক একটা খামখেয়ালির মতো।'' সানডে টাইমস বলছে এই অভিযোগ সম্পর্কে শেখ নাহিয়ানের বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি কোন উত্তর দেননি। তবে লন্ডনে মানহানি মামলার আইনি প্রতিষ্ঠান শিলিংস্-এর আইনজীবীদের একটি বিবৃতি পত্রিকাটিকে দেয়া হয়েছে যাতে বলা হয়েছে: ''আমাদের মক্কেল এই অভিযোগে বিস্মিত এবং মর্মাহত। এই ঘটনা যখন ঘটেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে, তার আট মাস পর এটা জানানো হচ্ছে এবং জানানো হচ্ছে একটি জাতীয় সংবাদপত্রের মাধ্যমে। এই ঘটনার বিবরণ অস্বীকার করা হচ্ছে।'' শিলিংস্ বিবিসিকেও এর বাইরে আর কিছু বলতে অস্বীকার করেছে। হে ফেস্টিভ্যালের সভাপতি ক্যারোলাইন মিশেল টুইটারে দেয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন: ''আমাদের সহকর্মী ও বন্ধু কেইটলিন ম্যাকনামারার সাথে গত ফেব্রুয়ারিতে আবুধাবিতে যে ঘটনা ঘটেছে সেটা তার ও তার পদমর্যাদার প্রতি আস্থার ন্যক্কারজনক লংঘন এবং একটা ঘৃণ্য নির্যাতনের ঘটনা।" ''শেখ নাহিয়ান বিন মুবারক আল নাহিয়ান মন্ত্রী হিসাবে তার দায়িত্বকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন এবং দেশটিতে বাক স্বাধীনতা ও নারীর ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠাকে আরও উজ্জীবিত করতে হে ফেস্টিভ্যাল আয়োজনের যে উদ্যোগ সরকার নিয়েছিল সেই প্রচেষ্টাকে খর্ব করেছেন।'' ''এই যৌন নির্যাতনের আইনি বিচার চাওয়ার ব্যাপারে কেইটলিনের পদক্ষেপকে আমরা সমর্থন করছি এবং ইউএই-তে আমাদের যারা বন্ধু ও পার্টনার আছেন তাদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি তারা যেন শেখ নাহিয়ান বিন মুবারক আল নাহিয়ানের আচরণ বিশ্লেষণ করে দেখেন এবং এধরনের আচরণ যে অগ্রহণযোগ্য বিশ্বের মানুষকে যেন স্পষ্টভাবে সেই বার্তাটা দেন। তিনি যতদিন মন্ত্রী পদে থাকবেন ততদিন হে ফেস্টিভ্যাল আবুধাবিতে যাবে না।'' আন্তর্জাত��কভাবে সুপরিচিত সাহিত্য ও শিল্প উৎসব 'হে ফেস্টিভ্যাল' এর পক্ষ থেকে উপসাগরীয় এক শীর্ষ রাজপরিবারের সদস্যের বিরুদ্ধে তাদের একজন নারী কর্মীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এনে এই ঘটনাকে "ন্যক্কারজনক লংঘন" বলে উল্লেখ করা হয়েছে। +text: মওদুদ আহমেদ বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে যে নতুন বিরোধীদলীয় জোট গঠিত হয়েছে - সেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফার প্রথমেই রয়েছে আগামী নির্বাচন কিভাবে হবে। এই দফায় আছে 'অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, আলোচনা করে নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।' লক্ষণীয় যে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের শর্ত হিসেবে বিএনপির নেতাদের মুখে আগে যা শোনা যেতো - অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং একটি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন - নতুন এই ৭ দফার প্রথমটিতে তার কিছুটা হেরফের দেখা যাচ্ছে। এখানে 'নির্দলীয়' কথাটি নেই। 'সরকারের পদত্যাগ' কথাটি আছে কিন্তু কি ধরনের 'নিরপেক্ষ' সরকার তার স্থলাভিষিক্ত হবে - সে ব্যাপারেও স্পষ্টভাবে কিছু বলা হয় নি। তাহলে আগামী নির্বাচন কি ধরনের সরকারের অধীনে হবে? বিএনপির সিনিয়র নেতা মওদুদ আহমদ বলছেন, এ নিয়ে তারা খুব শিগগীরই একটা রূপরেখা দেবেন। "এটা নিয়ে এখন আমরা কাজ করছি, যথাসময়ে আমরা রূপরেখা দেবো" - বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন মি. আহমেদ। এতে এত সময় লাগছে কেন? এ নিয়ে কি কোন মতপার্থক্য আছে? এ প্রশ্নের জবাবে মওদুদ আহমেদ বলেন, "কোন মতপার্থক্য নেই। তবে এখন প্রেক্ষাপট পাল্টেছে - আমরা ঐক্যফ্রন্ট করেছি, এককভাবে কিছু করার তো প্রশ্ন এখন নেই। আমরা প্রথম খসড়া তৈরি করেছি, এটার ওপর আলাপ-আলোচনা করতে হবে।" বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: মায়ের মাসিকের সাথে ছেলের বয়ঃসন্ধিকালের সম্পর্ক যৌন হয়রানির প্রতিবাদের ভিডিও ভাইরাল নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা শিগগীরই: মওদুদ ছিনতাইকারী ধরে পুরস্কার পেলেন ঢাকার যে তরুণী জিন্নাহর যে অসুস্থতার কথা কেউ জানত না বাংলাদেশী শিল্পীদের জন্য খুলছে ভারতের বাজার? সেই সরকার 'নির্দলীয়' হতে হবে কিনা - তার উল্লেখ ৭-দফায় নেই কেন, এ প্রশ্নের জবাবে মওদুদ আহমেদ বলেন, "নিরপেক্ষ বলতেই নির্দলীয় বোঝায়। নিরপেক্ষ মানেই তো হলো দল-নিরপেক্ষ।" বিএনপির নেতাদ��র মুখে বার বার শোনা গেছে যে নির্বাচনকালীন সরকারকে নিরপেক্ষ হতে হলে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। এখানে তার স্পষ্ট উল্লেখ নেই কেন? জবাবে মওদুদ আহমেদ বলেন - "সরকারের পদত্যাগ মানেই তো প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ। প্রধানমন্ত্রী ছাড়া তো সরকার হতে পারে না। তা ছাড়া আমরা বলেছি সংসদ বাতিল করতে হবে। সংসদ ভেঙে দিলে তো এমনিতেই আর সরকারের থাকার কোন সুযোগ নেই - যদি না আমরা অন্যরকম কোন ব্যবস্থা করি।" কিন্তু ঐক্যফ্রন্টের বর্তমান নেতা ড. কামাল হোসেন তো বলেছিলেন যে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অধীনেও নির্বাচন যাওয়া যেতে পারে -যদি সরকার সংবিধানের চেতনা এবং বিধি মেনে চলে। জবাবে মওদুদ আহমেদ বলেন, সেটা তিনি বলেছিলেন কিন্তু পরে তিনি তা রিট্র্যাক্টও করেছিলেন (প্রত্যাহার বা পিছিয়ে আসা অর্থে ) - বলেছিলেন যে তিনি ঠিক সেভাবে বলেন নি। প্রধানমন্ত্রী যদি বর্তমান মন্ত্রিসভা ভেঙে দেন, এবং তিনিই নেতৃত্বে থেকে একটা নতুন নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করেন - তাহলে সেটা কি ঐক্যফ্রন্টের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে? জবাবে মি. আহমেদ বলেন, "না - সেটা গ্রহণযোগ্য হবে না। সেটা তো একটা দলীয় সরকারই হবে। কারণ তর্কের খাতিরেই বলছি, প্রধানমন্ত্রী তো অন্যদের নিয়ে সরকার গঠন করতে পারবেন না - বর্তমান সংবিধান তো সেটা অনুমোদন করে না । সংবিধানে তো নির্বাচনকালীন সরকার বলে কিছু নাই। " "আর তারা যদি সংবিধান থেকে সরে এসেই কিছু করতে চান তাহলে আমাদের প্রস্তাবটা মেনে নিতে অসুবিধা কোথায়? - বলেন মি. আহমেদ। কিন্তু তেমন কিছু করতে হলে তো সরকার-বিরোধীদল আলোচনা হতে হবে - তার কি কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে? তিনি বলেন, "অবশ্যই - এ ব্যাপারে আমরা উন্মুক্ত মনে আলোচনা করতে চাই সরকারের সাথে। আলোচনা করতে হবে, সমঝোতায় আসতে হবে।" বিএনপির সিনিয়র নেতা মওদুদ আহমদ বলছেন, নির্বাচনকালীন সরকার কি ধরনের হবে, কিভাবেই বা তা গঠিত হবে তা নিয়ে তাদের নবগঠিত ঐক্যফ্রন্ট খুব শিগগীরই একটা রূপরেখা দেবেন। +text: ব্রিটেনে যুবকদের অনেকেই কনডম ব্যবহার করতে চান না এর কারণ জানতে অনেকের সাথে কথা বলেছেন বিবিসি'র সংবাদদাতারা। প্রথমে শোনা যাক হেইলি নামের একজনের কথা (আসল নাম নয়)। কলেজ ছুটির পর এক বিকেলে তার দেখা হয় এ্যারনের সাথে (এটিও আসল নাম নয়) - যাকে তিনি হাইস্কুলে পড়ার সময় অল্পস্বল্প চিনতেন। বহুদিন পর দেখা, তার ওপর ছুটির আগের সন্ধ্যেবেলা তাই শ��রু হয়ে গেল গল্প, সাথে পান। জানা গেল, এ্যারন মাঝখানে বেশ কয়েকবছর সেনাবাহিনীতে কাটিয়ে ফিরেছেন। রাত বাড়তে থাকলো, তাদের কথাবার্তাও একটু অন্যরকম হতে শুরু করলো। তারা একসাথে বাড়ি ফিরলেন। "এ্যারন যেহেতু অচেনা কেউ ছিল না - তাই একটা অপরিণত অল্পবয়েসী মেয়ের মতোই আমি ভাবলাম, কনডম ব্যবহারের কোন প্রয়োজন নেই" - বলছিলেন হেইলি। তাই হলো, এবং কয়েকদিনে মধ্যেই তিনি শরীরে ক্ল্যামাইডিয়া সংক্রমণের লক্ষণ দেখতে পেলেন। তার নিজের ওপরই রাগ হতে থাকলো, যে কেন তিনি এ কাজ করলেন। তার রাগ আরো বেড়ে গেল, যখন তিনি আরেক বন্ধুর কাছ থেকে জানতে পারলেন যে এ্যারনের নিজেরও জানা ছিল - তিনি ছোঁয়াচে রোগ বহন করছেন। কিন্তু তার পরও সে অরক্ষিত যৌন সম্পর্কের মধ্যে দিয়ে একের পর এক মেয়েকে সংক্রমিত করে চলেছিল। হেইলি নিজে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খেতেন, তা ছাড়াও তার মাথায় এটা ঘুরছিল যে 'কনডম ব্যবহারের কথা না তুললে তার পুরুষ সঙ্গী খুশি হবেন'। কিন্তু যখন তিনি বুঝলেন যে - তার দেহে যে সংক্রমণ হয়েছে তা না সারলে তিনি সন্তান ধারণের ক্ষমতা হারাতে পারেন - তখন তাকে নতুন করে ভাবতে হলো। যৌন সংক্রমণের পরীক্ষার সরঞ্জাম ব্রিটেনের স্কুলে যৌনশিক্ষার ক্লাসে কনডম ব্যবহারের কথা শেখানো হয় - কিন্তু তার পরও হেইলির মতো অনেকেই নিরাপদ যৌনসম্পর্কের নিয়ম কানুন মেনে চলেন না। ইউগভ এবং পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড নামে দুটি প্রতিষ্ঠানের জরিপে বলা হচ্ছে - ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়েসের তরুণতরুণীদের ওপর জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে যে তাদের অর্ধেকই স্বীকার করেছেন যে তারা কনডম ব্যবহার না করেই নতুন-পরিচিত সঙ্গীর সাথে যৌনমিলন করেছেন। আরো দেখা গেছে, এ বয়সের প্রতি ১০ জন যৌন-সক্রিয় তরুণতরুণীদের মধ্যে অন্তত একজন কখনোই কনডম ব্যবহার করে নি। অথচ ২০০৩ সালের এক জরিপে এই বয়সসীমার পুরুষদের মধ্যে ৪৩ শতাংশেরও বেশী বলেছিলেন - পূর্ববর্তী চার সপ্তাহের মধ্যে তারা প্রতিবারই যৌনসম্পর্কের সময় কনডম ব্যবহার করেছেন। অথচ এক দশক পরের জরিপগুলোয় দেখা যাচ্ছে, এই সংখ্যা ৩৬ শতাংশে নেমে এসেছে। একই ভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০০৭ ও ২০১৭ সালে করা জরিপে দেখা গেছে হাইস্কুল ছাত্রদের মধ্যে কনডম ব্যবহারের পরিমাণ ৬২ শতাংশ থেকে কমে ৫৪ শতাংশে নেমে গেছে। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: সমকামিতা বিষয়ে পড়ানোয় স্কুলের প্রধান শিক্ষককে হুমকি হুয়াওয়ে ব্যবহারকারীরা কী সমস্যায় পড়বেন? ঋণ খেলাপিদের বিশেষ সুবিধা আটকে দিল হাইকোর্ট সন্তানের পরিচয়ে মায়ের নাম ব্যবহার করলে কী লাভ হবে? যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে যেসব রোগ ছড়ায় - যেমন গণোরিয়া বা ক্ল্যামাইডিয়া - তা নিয়ে করা এক জরিপে দেখা গেছে, ইংল্যান্ডে প্রতি চার মিনিটে একজন তরুণ সংক্রমণের শিকার হচ্ছেন। সরকারি তথ্যে বলা হচ্ছে, এর মধ্যে ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সীরা আছেন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে। ব্রিটেনে সিফিলিস এবং 'সুপার গণোরিয়া' নামে একটি রোগও ছড়াচ্ছে - যা সাধারণ এন্টিবায়োটিক দিয়ে সারে না। এসব রোগ বিস্তার ঠেকাতে পারে কনডম, যা কোন কোন ওষুধের দোকানে তরুণরা বিনামূল্যেও পেতে পারে। কিন্তু তাহলে এর ব্যবহার কমছে কেন? অনেকে বলছেন, অন্যান্য গর্ভনিরোধক ব্যবহার বেড়ে যাওয়া এর একটা কারণ। ব্রিটেনের সরকারি স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা বলছে, ইমপ্ল্যান্ট, ইনজেকশন, এবং আইইউডির মতো দীর্ঘস্থায়ী জন্মনিরোধ পদ্ধতির ব্যবহার বাড়ছে। কনডমের ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন হচ্ছে নানা রকমের কনডম এখন বাজারে পাওয়া যায়। কিন্তু তবু জনপ্রিয়তা কমছে কেন? 'নারীদের কনডম'ও চালু হয়েছে ১৯৯২ সাল থেকে কিন্তু তা কখনোই জনপ্রিয়তা পায় নি। অনেকের মতে, এইচআইভি-এইডসের ভয় অপেক্ষাকৃত কমে যাওয়াটা একটা কারণ হতে পারে। কারণ এইচআইভি সংক্রমণ ঠেকানোর সাথে কনডমের নাম অনেক দিনে ধরেই জড়িয়ে গেছে। স্যামুয়েল (আসল নাম নয়) - যার বয়স ২৭, তিনি বলছেন তারা বড়দের কাছে এইডসের কথা শুনেছেন যে এ রোগ হলে মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। তবে এখন এইচআইভির কথা অনেক কম শোনা যায়, 'প্রেপ' নামে এমন ওষুধ বেরিয়েছে যাতে আগে থেকেই শরীরকে এইচআইভি থেকে সুরক্ষিত রাখা যায়, এইচআইভি-প্রতিরোধী এন্টি-রেট্রোভাইরাল ওষুধও বেরিয়েছে । এসবের সাথে কনডম ব্যবহার কমে যাবার সম্পর্ক দেখা গেছে অস্ট্রেলিয়ায় চালানো এক জরিপে - যাতে পুরুষ সমকামীরাও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এইচআইভি ছাড়া অন্য যৌন রোগগুলো অতটা ভীতি-উদ্রেককারী নয়, হয়তো এন্টিবায়োটিক দিয়েই সেগুলোর চিকিৎসা সম্ভব। এইচ আই ভির ওষুধ এমন অনেক যুগল আছেন যারা কনডম ব্যবহার পছন্দ করেন না, কনডমের কারণে তারা যথেষ্ট উত্তেজিত হতে পারেন না এমন সমস্যাও আছে, - যাকে বলে সি আর ই পি। এটা সব বয়েসের পুরুষের মধ্যেই দেখা যায়, বলছিলেন সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনথিয়া গ্রা���াম। তিনি বলছিলেন, অনেকেই অভিযোগ করেন এতে যৌন অনুভূতি কমে যায়। কোন কোন নারী মনে করেন কনডম ব্যবহার করতে বললে তাকে পুরুষসঙ্গীকে হারাতে হবে। তা ছাড়া কনডম কিনতে যাওয়াটাও অনেকের জন্য একটা সমস্যা, বিশেষ করে মেয়েদের জন্য। তা ছাড়া রয়েছে, আরো কিছু শারীরিক অসুবিধা বা ছিঁড়ে যাবার সমস্যা। অনেক যুগলই কনডম ব্যবহার নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলতে অস্বস্তি বোধ করেন, এটাও একটা কারণ। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের কথা হলো, এ ক্ষেত্রে সম্পর্কের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্রিটেনে এখন যেভাবে যৌন শিক্ষা দেয়া হচ্ছে তাতে আগামীতে অনেক পরিবর্তন আসছে। ভবিষ্যতে তরুণদের হয়তো দেখা যাবে এ বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গী অনেক পাল্টে গেছে। আরো পড়তে পারেন: না বুঝেই যৌন সম্পর্কে জড়াচ্ছে কিশোরীরা, বলছেন শিক্ষক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে পুরুষদের ভাবনা যৌন শিক্ষা: বাংলাদেশে কী পড়ানো হচ্ছে শ্রেণীকক্ষে জেনে নিন এইচআইভি সম্পর্কে কয়েকটি ভুল ধারণা নানা দেশের মানুষের যৌনজীবন: মজার কিছু তথ্য নিরাপদ যৌনমিলনের প্রতি আগ্রহ কি কমে যাচ্ছে? কনডমের ব্যবহার কমে যাবার ইঙ্গিত সাম্প্রতিক কিছু জরিপে পাবার পর বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে ভাবতে শুরু করেছেন। +text: জো বাইডেন এবং সৌদি বাদশাহ সালমান ক্ষমতা নেওয়ার ৩৫ দিন পর গতকাল (বৃহস্পতিবার) মি. বাইডেন প্রথমবারের মত সৌদি বাদশাহ সালমানের সাথে টেলিফোনে কথা বলেন। এই ফোনালাপ এমন সময় হলো যখন হোয়াইট হাউজ এক-দুদিনের মধ্যেই সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগজি হত্যা নিয়ে একটি গোয়েন্দা রিপোর্ট প্রকাশ করতে চলেছে বলে জানা গেছে। রিপোর্টটি পড়ার পরই এই টেলিফোন কল করেছেন মি,বাইডেন, এবং জোর ইঙ্গিত রয়েছে যে ঐ হত্যাকাণ্ডে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রত্যক্ষ ভূমিকার কথা রিপোর্টটিতে রয়েছে। বৃহস্পতিবারের টেলিফোনে আলাপে খাসোগজি হত্যাকাণ্ড এবং যুবরাজ মোহাম্মদ নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কিনা তা হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে বলা হয়নি। তবে এক বিবৃতিতে বলা হয় - প্রেসিডেন্ট বাইডেন “আইনের শাসন এবং সার্বজনীন মানবাধিকারের“ প্রতি তার শক্ত অঙ্গীকারের কথা বলেছেন। হোয়াইট হাউজের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি লুজাইন আল হাথলুল সহ বেশ ক'জন সৌদি মানবাধিকার কর্মীর কারামুক্তিকে মি. বাইডেন “ইতিবাচক“ অগ্রগতি হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন। তিন বছর পর এ মাসেই নারী অধিকারকর��মী মিস হাথলুলকে ছাড়া হয় - যদিও তার ওপর শর্ত দেয়া হয়েছে যে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না এবং মিডিয়ার সাথেও কথা বলতে পারবেন না। দুই নেতা “সৌদি আরব এবং আমেরিকার মধ্যে দীর্ঘ সহযোগিতার সম্পর্ক এবং ইরান সমর্থিত বিভিন্ন গোষ্ঠী সৌদি নিরাপত্তার প্রতি যে হুমকি তৈরি করেছে“ তা নিয়ে কথা বলেন। গতানুগতিক এই বিবৃতিকে অবশ্য তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না পর্যবেক্ষক এবং সাংবাদিকরা। তাদের চোখ এখন খাসোগজি হত্যার ওপর সিআইএর রিপোর্টে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে কি থাকবে এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে মি. বাইডেন কি পথ নেবেন - সেদিকেই। ফেঁসে যাচ্ছেন সৌদি যুবরাজ? ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে সৌদি রাজপরিবারের সমালোচক এবং যুক্তরাষ্ট্র-প্রবাসী সাংবাদিক জামাল খাসোগজিকে হত্যা করা হয় ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে। এর প্রায় পরপরই এ হত্যাকাণ্ডের সাথে যুবরাজ মোহাম্মদের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে তাদের সন্দেহের কথা জানিয়েছিল মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ। সাংবাদিক জামাল খাসোগজির হত্যাকাণ্ড নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করবে যুক্তরাষ্ট্র সে বছরই কংগ্রেসের একটি কমিটিতে তাদের সন্দেহের পক্ষে গোপন তথ্য প্রমাণও তারা দিয়েছিল। হোয়াইট হাউজ এখন সেই গোপন রিপোর্টের অংশবিশেষ প্রকাশ করতে চলেছে, এবং সরকারী বিভিন্ন সূত্রে নির্ভরযোগ্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলো বলছে রিপোর্টে খাসোগজি হত্যাকাণ্ডে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের জড়িত থাকার কথা রয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টর্স বুধবার তাদের এক রিপোর্টে বলেছে, সিআইএ'র রিপোর্টে এমন কথা রয়েছে যে সৌদি যুবরাজ নিজে খাসোগজি হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা “অনুমোদন করেছিলেন এবং সম্ভবত হত্যার নির্দেশও তিনি দিয়েছিলেন।“ যদিও সৌদি সরকার সমসময় এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের বক্তব্য - সৌদি নিরাপত্তা বিভাগের একটি অংশ সরকারের অগোচরে নিজেদের সিদ্ধান্তে ঐ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। সৌদি আরবের মানবাধিকার পরিস্থিতি, ইয়েমেনের যুদ্ধ এবং ব্যক্তি যুবরাজ মোহাম্মদের ব্যাপারে তার নেতিবাচক মনোভাব কখনই চেপে রাখেননি জো বাইডেন। ২০১৯ সালের নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থিতা নিয়ে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মধ্যে এক বিতর্কে তিনি খোলাখুলি বলেছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশেই জামাল খাসোগজিকে ���ত্যা করা হয়েছে, এবং “সৌদি আরবকে এর জন্য জবাবদিহি করা হবে।“ বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: খাসোগজি হত্যার দায় সৌদি আরবের: জাতিসংঘ খাসোগজিকে 'কোরবানির পশু' বলে বর্ণনা করেছিল এক ঘাতক খাসোগজিকে খুন করা হয়েছে, নতুন সৌদি স্বীকারোক্তি হত্যার আগে থেকেই কীভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছিল খাসোগজিকে সৌদি আরবের সাথে কী 'চাল' চালছে তুরস্ক? মি. বাইডেন যে একেবারে ফাঁকা বুলি দেননি তার ইঙ্গিত স্পষ্ট। ইতিমধ্যেই ইয়েমেনের যুদ্ধে সৌদি আরবকে সহযোগিতা বন্ধের কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। এরপর খাসোগজি হত্যাকাণ্ড নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়ে তা আরো খোলাসা করলেন। সৌদি-আমেরিকা সম্পর্কে নতুন রূপ খাসোগজি হত্যাকাণ্ডে জড়িত সৌদি নিরাপত্তা বাহিনীর ১৭ জনের ওপর যুক্তরাষ্ট্র অনেক আগেই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং তাদের সম্পদ আটকে রাখাসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে। ম্যাগনিস্তকি অ্যাক্ট নামে এক বিশেষ আইনের আওতায় এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কিন্তু সেই আইন কি যুবরাজ মোহাম্মদের ওপরও প্রয়োগ করবে বাইডেন প্রশাসন? যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভান গত সপ্তাহে সিএনএনের সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, সিআইএর রিপোর্টটি প্রকাশের পর অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু যুবরাজ মোহাম্মদ জড়িত থাকলে তার ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে কিনা তা খোলাসা করেননি তিনি। তবে সৌদি যুবরাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর জন্য হোয়াইট হাউজের ওপর নানা দিক থেকে চাপ রয়েছে। সৌদি যেসব ভিন্নমতাবলম্বী যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে রয়েছেন, তাদের পক্ষ থেকেও বিবৃতি জারি করা হচ্ছে। জানা গেছে, আজ (শুক্রবার) কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাট সদস্যদের পক্ষ থেকে খাসোগজি হত্যাকাণ্ডের জন্য সৌদি সরকারকে দায়ী করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হতে পারে। বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বিষয়ক জাতিসংঘের র‌্যাপোর্টিয়ার অ্যাগনেস কারামার্ড, যিনি খাসোগজি হত্যাকাণ্ডেরও তদন্ত করেছেন, ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানকে বলেছেন যদি গোয়েন্দা তথ্যে সৌদি যুবরাজের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায় - তাহলে তার ওপর অন্তত আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা অবশ্যই উচিৎ। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে বিবিসির সংবাদদাতা বারবারা প্লেট-উশের বলছেন, সরকারি রিপোর্টে হত্যার নির্দেশদাতা হিসাবে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদের নাম আসলে তা দুই দেশের সম্পর্কে নি:সন্দেহে চাপ তৈরি করবে। তিনি বলেন, “একদিন হয়তো এই যুবরাজই হয়তো আমেরিকার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মিত্র দেশের সর্বেসর্বা হবেন, এবং খুব দ্রুতই হয়তো তিনি তা হয়ে যেতে পারেন।“ সেই বিবেচনায় অনেক পর্যবেক্ষক মনে করছেন সিআইএর রিপোর্টে যুবরাজ মোহাম্মদের নাম করা হলেও তাকে হয়তো ব্যক্তিগতভাবে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হবে না। বড়জোর আমেরিকায় সৌদি রাষ্ট্রীয় তহবিলের বিনিয়োগ নিষিদ্ধ সহ কিছু ব্যবস্থা হয়তো দেখা যেতে পারে। বিবিসির বারবারা প্লেট মনে করেন হোয়াইট হাউজ হয়তো তাদের অসন্তোষ জানাবে, ব্যক্তিগত জবাবদিহিতার কথা বলবে, তবে একই সাথে “কিছু ক্ষেত্রে রিয়াদের সাথে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।“ তবে হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে খুব স্পষ্ট করে জানান দেয়া হচ্ছে যে মি. ট্রাম্পের চার বছরে যেভাবে চলেছে সৌদি আরবের সাথে সম্পর্ক - তা আর একই কায়দায় চলবে না। সে কারণেই প্রেসিডেন্ট বাইডেন কথা বলেছেন সৌদি বাদশাহর সাথে - যদিও সরকার কার্যত চালাচ্ছেন তার ছেলে যুবরাজ মোহাম্মদ। হোয়াইট হাউজ স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে এখন থেকে এটাই হবে তাদের নীতি। “প্রেসিডেন্ট বাইডেন সৌদি আরবের সাথে সম্পর্কে নতুন কাঠামো দেবেন,“ খোলাখুলি বলেছেন তার মুখপাত্র জেন সাকি। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: ব্রাজিলের আমাজন বনভূমি যেভাবে বিক্রি হচ্ছে ফেসবুকে মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে বিক্ষোভ, তদন্তের আশ্বাস সরকারের ব্রিটেনে ফিরতে পারবেন না শামীমা বেগম কারাগারেই মৃত্যু লেখক মুশতাক আহমেদের বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গের নতুন ট্রেনে ভারতীয়দের কী লাভ বহুদিন ধরেই মধ্যপ্রাচ্যে এবং মুসলিম বিশ্বে সৌদি আরব আমেরিকার প্রধান গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হলেও রিয়াদের সাথে কথা বলতে জো বাইডেন এক মাসেরও বেশি সময় নিয়েছেন। +text: বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে ৮টি উইকেট নিয়েছেন গাজী গ্রুপের ডানহাতি পেস বোলার ইয়াসির আরাফাত ক্রিকেট ইতিহাসে এক ওয়ানডে ইনিংসে ৮ উইকেট নেয়া একাদশ বোলার তিনি। চলতি বছর হয়ে যাওয়া অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে তার খেলার কথা থাকলেও চোটের কারণে খেলতে পারেননি। বুধবার গাজী গ্রুপ ক্রিকেটোর্সের আরাফাতের এই বোলিং তোপে ২৬ ওভার ১ বলে মাত্র ১১৩ রানে গুটিয়ে যায় আবাহনী। এটি ছিল চলতি লিগে ইয়াসিন আরাফাতের প্রথম ম্যাচ। য���খানে ৪০ রান দিয়ে আট উইকেট নিয়েছেন তিনি। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় আরাফাতের। গেল বছর অভিষেক ম্যাচেও আবাহনীর বিপক্ষে ৬টি উইকেট নিয়েছিলেন আরাফাত। সেবার তিনি ব্রাদার্স ইউনিয়নের হয়ে খেলেন। এই ফরম্যাটের ঘরোয়া ক্রিকেটে বাংলাদেশের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড ছিল আব্দুর রাজ্জাকের। এই বাহাতি স্পিনার ২০০৩-০৪ মৌসুমে ঢাকায় জিম্বাবুয়ে 'এ' দলের বিপক্ষে ১৭ রানে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন। আর লিস্ট 'এ' মর্যাদা পাওয়ার পর ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড ছিল ব্রাদার্সের শন উইলিয়ামসের। ২০১৩-১৪ মৌসুমে জিম্বাবুয়ের এই বাঁহাতি স্পিনার কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমির বিপক্ষে ২৫ রানে নিয়েছিলেন ৭ উইকেট। লিস্ট 'এ' বা ঘরোয়া ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে ৮টি উইকেট নিয়েছেন গাজী গ্রুপের ডানহাতি পেস বোলার ইয়াসিন আরাফাত। +text: প্রিন্স তুর্কি, প্রিন্স সুলতান আর প্রিন্স সাইফ আল-নাসের তাদের তিনজনকেই অপহরণ করে সৌদি আরবে ফিরিয়ে নেয়া হয়েছিল - এমন প্রমাণও রয়েছে। আর তারপর থেকে তাদের সম্পর্কে আর কিছু জানা যায়নি। সুলতান বিন তুর্কি বিন আব্দুলআজিজ ২০০৩ সালের ১২ই জুন সকালের ঘটনা। সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরের বাইরে একটি প্রাসাদে ঢুকতে দেখা যায় একজন সৌদি রাজপুত্রকে। তার নাম সুলতান বিন তুর্কি বিন আব্দুল আজিজ। আরো পড়ুন: জামাল খাসোগি: কে এই সৌদি সাংবাদিক খাসোগজি হত্যাকাণ্ডে সন্দেহভাজন কারা এই ১৫ জন? খাসোগজি হত্যাকাণ্ড: যে গল্পের শেষ নেই খাসোগজি হত্যা: 'বলির পাঁঠা' জেনারেল আসিরি? সঙ্গীদের সাথে যুবরাজ সুলতান বিন তুর্কি (মাঝে) প্রাসাদটিও রাজপুত্রের আত্মীয় প্রয়াত সৌদি বাদশাহ ফাহাদের। বাদশাহ ফাহাদের ছেলে রাজপুত্র আবদুলআজিজ বিন ফাহাদের সাথে সকালের নাস্তা খেতে প্রাসাদে যান সুলতান। একপর্যায়ে সৌদি সরকারের সমালোচক সুলতানকে নিজ দেশ সৌদি আরবে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন আব্দুলআজিজ। সুলতান ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানালে তখন আব্দুলআজিজ একটি ফোন করতে যান। তখন ঐ কক্ষে থাকা দ্বিতীয় ব্যক্তি, সৌদি আরবের ইসলাম ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী শেখ সালেহ আল-শেখ, কক্ষ ছেড়ে চলে যান। কিছুক্ষণের মধ্যেই মুখোশ পরা কয়েকজন ঘরে ঢুকে এবং সুলতানকে চেতনাহীন করে সেখান থেকে সরিয়ে নেয়। অজ্ঞান অবস্থাতেই সুলতানকে জেনেভা বিমানবন্দরে নেয়া হয় এবং সেখানে অপেক্ষারত একটি বিমানে ওঠানো হয় তাঁকে। অনেকবছর পর সুইজারল্যান্ডের একটি আদালতে ঠিক এভাবেই সেদিনের ঘটনা বর্ণনা করছিলেন সুলতান। পরে জেনেভার হোটেলে থাকা সুলতানের সঙ্গীসাথীদের জানানো হয় যে সুলতানকে রিয়াদ নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাই তাদের আর কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু সুলতান কী এমন করেছিলেন যেজন্য তাকে এভাবে অপহরণ করতে হলো? সৌদি আরবে ফেরত গিয়ে সুলতানের ভাগ্যে কি ঘটেছিল তা জানা না গেলেও ধারণা করা হয় তাঁকে কারাগারে এবং ঘরে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। দীর্ঘসময় কারাগারে এবং বাড়িতে আটক থাকার পর সুলতানের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাতে সম্মত হয় রাজপরিবার। ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে সুইস আদালতে আব্দুলআজিজ বিন ফাহাদ এবং শেখ সালেহ আল-শেখ এর বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা করেন সুলতান। প্রথমবার কোনো সৌদি রাজপরিবারের সদস্যের আরেক রাজপরিবারের সদস্যের বিরুদ্ধে পশ্চিমা আদালতে মামলা দায়েরের ঘটনা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। সেখান থেকে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ইউরোপ যান সুলতান। চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ইউরোপে পৌঁছানোর পর থেকেই সৌদি সরকারের সমালোচনা করে বিভিন্ন ইউরোপিয় গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে শুরু করেন সুলতান। তার সাক্ষাৎকারে রাজপরিবারের সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেন তিনি। এরপর ২০১৬ সালে সুলতান এবং তাঁর ১৮ জন সফরসঙ্গীকে প্যারিস থেকে কায়রো নিয়ে যাওয়া হবে বলে একটি বিমানে উঠিয়ে রিয়াদে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর থেকে আর কোনে খোঁজ পাওয়া যায়নি সুলতানের। ২০০৩ সালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে যুবরাজ তুর্কি বিন বান্দার রাজপুত্র তুর্কি বিন বান্দার রাজপুত্র তুর্কি বিন বান্দার একসময় সৌদি পুলিশের একজন মেজর ছিলেন, যিনি রাজপরিবারের সদস্যদের পুলিশি সেবা দেয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। কিন্তু উত্তরাধিকারের দ্বন্দ্বে পরিবারের সদস্যদের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পরলে একসময় কারাদণ্ড দেয়া হয় তাকে। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ২০১২ সালে প্যারিসে চলে যান তিনি। সেখানে গিয়েই সৌদি আরবের সংস্কার চেয়ে ইউটিউবে ভিডিও পোস্ট করা শুরু করেন তিনি। রাজপুত্র সুলতানের মত তুর্কিকেও আলোচনার মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে সৌদি কর্তৃপক্ষ। তবে আলোচনার মাধ্যমে রাজপুত্র তুর্কির মন গলাতে পারেনি সৌদি সরকারি কর্মকর্তারা। ২০১৫ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত ইউটিউবে ভিডিও পোস্ট করে যান তুর্কি। সেবছরের শেষদিকে হঠাৎই উধাও হয়ে যান তিনি। তারপর এখন পর্যন্ত রাজপুত্র তুর্কি বিন বান্দার এর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। যুবরাজ সউদ বিন সাইফ আল-নাসের রাজপুত্র সউদ বিন সাইফ আল-নাসের রাজপুত্র তুর্কি নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার কাছাকাছি সময় একই ধরণের পরিণতি হয় আরেকজন রাজপুত্রসউদ বিন সাইফ আল-নাসেরের। ইউরোপে বিলাসবহুল জীবনযাপনে উৎসাহী ছিলেন এই রাজপুত্র। ২০১৪ সাল থেকে টুইটারে সৌদি রাজতন্ত্রকে কটাক্ষ করে পোস্ট দেয়া শুরু করেন সৌদ। পরের বছর বাদশাহ সালমানকে ক্ষমতাচ্যুত করার উদ্দেশ্যে অজ্ঞাতনামা একজন সৌদি রাজপুত্রের লেখা দু'টি চিঠি ফাঁস হলে ঐ যুবরাজের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন সৌদ। এক টুইটে ঐ চিঠির বিষয়বস্তুকে গুরুত্বের সাথে নিতে সৌদি জনগণকে আহ্বান জানান সৌদ। এর কিছুদিন পর থেকে তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টটি নিরব হয়ে যায়। জার্মানিতে পালিয়ে যাওয়া আরেকজন সৌদি রাজপুত্র খালেদ বিন ফারহানের ধারণা গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক বৈঠকের কথা বলে কৌশলে সৌদকে রিয়াদে ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে। রাজপুত্র খালেদ বলেন, "সৌদি রাজতন্ত্রের সমালোচনা করা আমার চারজনই ছিলাম ইউরোপে, যাদের মধ্যে তিনজনকেই অপহরণ করা হয়েছে।" রাজপুত্র খালেদ আশঙ্কা করছেন নিকট ভবিষ্যতে তাঁকেও অপহরণ করা হতে পারে। জামাল খাসোগজি হত্যা: সৌদি সমালোচকরা যেভাবে গুম হয়ে যান ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ইউরোপে বসবাসরত তিনজন সৌদি রাজপুত্র নিখোঁজ হয়ে যান যাদের প্রত্যেকেই সৌদি সরকারের সমালোচক ছিলেন। +text: ভারতের প্রথম করোনা আক্রান্ত শনাক্ত করা গিয়েছিল দক্ষিণ ছোট রাজ্য কেরালাতে তারপর থেকে দেশটিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে বুধবার এগারো হাজার ছাড়িয়েছে। কিন্তু কেরালায় সংখ্যাটি আটকে আছে ৩৮৭ তে, মারা গেছে মাত্র তিনজন। কেরালা যেভাবে করোনা মহামারির মোকাবেলা করছে, তা এখন শুধু ভারতে নয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশেও স্বীকৃতি পাচ্ছে 'কেরালা মডেল' নামে। কীভাবে মহামারির মোকাবেলা করল কেরালা রাজ্য? রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রী মিসেস কে কে শৈলজা বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "যখনই এই ভাইরাসের কথা শোনা যায়, তখন থেকেই আমরা প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। ২০১৮ সালে আরেক ভাইরাস 'নিপাহ' আমাদের রাজ্যে ছড়িয়েছিল। ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল তখন।" "সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তাই এবার আমরা অনেক আগে থেকেই ঠিক করে নিয়েছিলাম যে কীভাবে করোনার মোকাবিলা করা হবে। তাই জানুয়ারির শেষদিকে যখন প্রথম বিমানটি উহানে আটকিয়ে পড়া কেরালাবাসীদের নিয়ে এখানে নামল, আমরা প্রস্তুত হয়েই ছিলাম।" বিমানবন্দরেই প্রত্যেকের তাপমাত্রা মাপা হয়। যাদের সামান্য উপসর্গও দেখা গেছে, তাদেরই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওই বিমানেই এসেছিলেন উহানে মেডিক্যাল পড়তে যাওয়া এক ছাত্র। তিনিই ছিলেন ভারতে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি। বিমানবন্দরেই প্রত্যেকের তাপমাত্রা মাপা হয়। যাদের সামান্য উপসর্গও দেখা গেছে, তাদেরই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আলেপ্পেই শহরের বাসিন্দা পন্নুমোন চন্দ্রশেখর কুডুপ বলছিলেন, "সরকার যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজটা করেছে, তা হল বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের পরীক্ষা। খুবই জোর দেওয়া হয়েছিল ওই ব্যাপারটায়।" "কেরালায় বহু মানুষ মধ্য প্রাচ্যে থাকে, আবার বহু ছাত্রছাত্রী চীনেও পড়াশোনা করে। এদের সবার পরীক্ষা হয়েছে - যাদেরই অসুস্থতার লক্ষণ দেখা গেছে, তাদেরই কোয়ারেন্টিনে রেখে চিকিৎসা করা হয়েছে।" কেউ কেউ নিজেদের সফরের ইতিহাস লুকিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন, কিন্তু শেষমেশ যখন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন আর লালারস পরীক্ষায় করোনা ধরা পড়েছে, তখনই সরকার প্রচুর লোকবল লাগিয়ে খুঁজে বার করেছে যে তারা দেশে আসার পরে কোথায় গিয়েছিল, কোন কোন মানুষের সঙ্গে দেখা করেছে - সব কিছু। "এটা সত্যিই অসাধ্য সাধন করেছে - যে জন্য রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এত কম রাখা গেছে" বলছিলেন মি. পন্নুমোন কুডুপ। 'কন্টাক্ট ট্রেসিং' বা করোনা আক্রান্ত কোনও ব্যক্তি অন্য যাদের সংস্পর্শে এসেছেন, তাদের খুঁজে বার করা রীতিমতো খড়ের গাদায় সূচ খোঁজার মতো ঘটনা। কিন্তু রাজ্য স্তরে সেই দায়িত্ব একজন অফিসারকে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুমটি চালু হয়েছে ২৪ জানুয়ারি থেকেই। "সেখানে কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ের জন্য যেমন একজন দায়িত্বে আছেন, তেমনই আরও ১৭ জন বিশেষজ্ঞও নানা কাজের দায়িত্বে আছেন। কারও কাজ লজিস্টিক্স সামলানো - অর্থাৎ ব্যক্তিগত সুরক্ষা পোশাক যোগাড় প্রভৃতি, কোনও বিশেষজ্ঞর দায়িত্ব মানসিক চাপে যারা পড়েছেন, তাদের সামলানো।" "��ভাবেই আমরা সংক্রমণ মোকাবিলার প্রত্যেকটা কাজ ভাগ করে দিয়েছি। প্রতিদিন দুপুরে পর্যালোচনা হয় আর পরের দিনের পরিকল্পনা তৈরি হয়। এসব ব্যবস্থাই নিপা ভাইরাস সংক্রমণের সময়েই করে রাখা হয়েছিল," জানাচ্ছিলেন মন্ত্রী মিসেস শৈলজা। কোচি শহরের বাসিন্দা শান্তি পিল্লাই দীর্ঘদিন কলকাতায় থেকেছেন। তিনিও বলছিলেন নিপা ভাইরাস সংক্রমণের অভিজ্ঞতা এবার খুব কাজে এসেছে। মিসেস পিল্লাইয়ের কথায়, "নিপা ভাইরাস সংক্রমণের সময় থেকেই রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার একটা প্রস্তুতি ছিল। হাসপাতালগুলিতে আইসোলেশন ওয়ার্ড বা শহরে লকডাউন - এসব জানাই ছিল। মানুষও সচেতন হয়ে গিয়েছিল সেই সময় থেকেই - তাই এবারের করোনা ভাইরাস আক্রমণের আগেই একটা রিহার্সাল তখনই দেওয়া হয়ে গিয়েছিল। দেশে আনুষ্ঠানিক লকডাউনের আগে থেকেই কিন্তু কেরালায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা - রাস্তায় মানুষ কম বেরনো - প্রতিটা বাস স্ট্যান্ডে সাবান আর জলের ব্যবস্থা করা - যাতে সবাই হাত ধুয়ে নিতে পারে - এসব শুরু হয়ে গিয়েছিল।" "তবে নিপা সংক্রমণের থেকে করোনা সংক্রমণ মোকাবিলা করাটা আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ। কারণ নিপা সংক্রমিত ব্যক্তিদের উপসর্গগুলো স্পষ্ট বোঝা যায়, কিন্তু করোনা আক্রান্তদের লক্ষণ অনেক পরে দেখা যায়। তাই উপসর্গ নেই এরকম ব্যক্তিরা অনেকের সঙ্গে মেলামেশা করেন - তার থেকেই ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে," বলছিলেন মিসেস শৈলজা। একদিকে ভাইরাস মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ, আর অন্যদিকে চলেছে ব্যাপক প্রচার। সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে গণমাধ্যম বা রাস্তায় বিজ্ঞাপন করা হয়েছে - লেখা হয়েছে একটাই বাক্য - 'ব্রেক দা চেইন'। বহু মানুষ চিকিৎসায় সেরেও উঠেছেন - যাদের মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য এক দম্পতি - যার একজন ৯২ আর আরেকজন ৮৮ বছর বয়সী। "এই দুজনকে সারিয়ে তোলা আমাদের চিকিৎসকদের একটা বড় সাফল্য। বয়স্করাই বেশি সংখ্যায় মারা যান করোনায়। কিন্তু এরা দীর্ঘ চিকিৎসার পরে সেরে উঠেছেন। আমাদের রাজ্যে জনসংখ্যার ১৫% ই বয়স্ক। তাই তাদের মধ্যে যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়, সেটাও আমাদের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল," বলছিলেন মিসেস শৈলজা। কেরালায় যেভাবে করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, তা ভারতে তো বটেই, বিদেশেও আলোচিত হচ্ছে। সমাজের সবার অন্তর্ভূক্তি কেরালায় যেভাবে করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, তা ভারতে তো ���টেই, বিদেশেও আলোচিত হচ্ছে। ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলি যখন কেরালার সাফল্যের বিশ্লেষণ করছে, তখন তারা লিখছে যে রাজ্যে যেভাবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে দীর্ঘদিন ধরে - গ্রামীণ চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে বড় হাসপাতাল পর্যন্ত, তারও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে করোনা মোকাবিলার জন্য। আরও একটি বিষয় আলোচিত হচ্ছে কেরালার মহামারি নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে - তা হল ভিন্ন রাজ্য থেকে সেখানে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের যেভাবে সেখানকার সরকার দেখভাল করেছে, সেই বিষয়টি। নানা জায়গায় যখন অন্য রাজ্য থেকে কাজে যাওয়া শ্রমিকরা কোনওমতে একবেলা খাবার পাচ্ছেন, তখন কেরালায় এই শ্রমিকদের বলা হচ্ছে 'অতিথি শ্রমিক'। সরকার চালু করেছে তাদের জন্য গণ রান্নাঘর। ভারতে এধরণের শ্রমিকদের খাবার যোগান দেওয়ার জন্য মোট যত রান্নাঘর চলছে, তার অধিকাংশই কেরালায়। মিসেস শান্তি পিল্লাই বলছিলেন, "বাংলা, উড়িষ্যা এসব রাজ্য থেকে বিরাট সংখ্যক শ্রমিক কেরালায় আছেন। তাদের দেখভাল করাটা আমাদের সরকারের কাছে একটা বড় দায়িত্ব ছিল। একটা সময়ে তারা আমাদের জন্য কাজ করেছেন, তাই এখন বিপদের সময়েও আমাদের উচিত তাদের দেখাশোনা করা।" সরকার নিয়ন্ত্রিত নারী সমিতিগুলিকে দায়িত্ব দেওয়া হয় গণ রান্নাঘর চালানোর। এইসব শ্রমিকদের সেখান থেকেই খাবার দেওয়া হচ্ছে। ভারতের প্রথম করোনা আক্রান্ত শনাক্ত করা গিয়েছিল দক্ষিণ ভারতের ছোট রাজ্য কেরালাতে চীনের উহান থেকে আসা এক ছাত্রের দেহে। +text: যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সৌদি আরবের ভবিষ্যৎ রাজা কিন্তু ভবিষ্যৎ সৌদি রাজা হিসেবে তার অভিষেক - রক্ষণশীল সৌদি সমাজ সংস্কারের নানা উদ্যোগ, ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ এবং সবশেষ জামাল খাসোগজি হত্যাকান্ড - এগুলোর সাথে তার নাম জড়িয়ে যাওয়ার কারণে সারা বিশ্বের নজর এখন তার দিকে। কিন্তু কীভাবে বেড়ে উঠেছিলেন এই প্রিন্স সালমান? তার শৈশব সম্পর্কে লোকে কতটুকু জানে? এর ওপরই খানিকটা আলোকপাত করেছেন বিবিসি আরবি বিভাগের রাশিদ সেক্কাই - যিনি শিশু প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের গৃহশিক্ষক ছিলেন, তাকে ইংরেজি শেখাতেন। সম্প্রতি তিনি বর্ণনা করেছেন তার সেই সময়কার স্মৃতি। "সেটা ১৯৯৬ সাল। আমি তখন জেদ্দার নামকরা স্কুল আল-আনজালে পড়াই। তখন রিয়াদের গভর্নর ছিলেন প্রিন্স সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ - যিনি এখন সৌদি আরবের বাদশাহ, এবং যুবারাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের পিতা।" "প্রিন্স সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ তখন সাময়িকভাবে তার পরিবার নিয়ে জেদ্দায় এসেছেন, এবং তার দরকার হয়েছিল তার সন্তানদের জন্য একজন ইংরেজির শিক্ষক।" বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: সৌদি আরব: রাজপরিবারের ভেতর কী ঘটছে? সৌদি আরবে কে এই প্রবল ক্ষমতাধর যুবরাজ মোহাম্মদ 'সৌদি যুবরাজই খাসোগজিকে হত্যার নির্দেশ দেন ': সিআইএ খাসোগজি হত্যার নির্দেশ আসলে কে দিয়েছিলেন? প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান "তিনি যোগাযোগ করলেন আমি যে স্কুলে পড়াতাম সেই স্কুলের সাথে। তখন আমাকে নিয়ে যাওয়া হলো রাজকীয় প্রাসাদে। আমার ছাত্র হলেন তার প্রথম বিয়ে থেকে জন্মানো কয়েকজন রাজপুত্র। প্রিন্স তুরকি, প্রিন্স নায়েফ, প্রিন্স খালিদ, এবং প্রিন্স মোহাম্মদ।" "আমি তখন জেদ্দার একটা উঠতি এলাকায় একটা ফ্ল্যাটে থাকি। প্রতিদিন সকাল বেলা সাতটার সময় একজন শোফার (ড্রাইভার) এসে আমাকে আল-আনজাল স্কুলে নিয়ে যেতো। বিকেলের দিকে স্কুল শেষ হলে এই ড্রাইভারই আমাকে নিয়ে যেতো রাজপ্রাসাদে।" "প্রাসাদের গেটের কড়া পাহারা পার হয়ে যাবার পর গাড়িটি অনেকগুলো চোখ-ধাঁধানো বাগানওয়ালা ভিলা পার হয়ে রাজকীয় প্রাসাদের সামনে পৌঁছাতো। সামনের নিখুঁতভাবে সাজানো বাগানের পরিচর্যা করছে সাদা পোশাক পরা মালীরা। " যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের গৃহশিক্ষক ছিলেন রাশিদ সেক্কাই "সেখানে একটি কার পার্ক দেখলাম - তাতে দাঁড়িয়ে আছে বহু বিলাসবহুল গাড়ি। একটা গাড়ি দেখলাম গোলাপি রঙের - মনে হলো ওটা একটা ক্যাডিলাক। এই প্রথম আমি নিজের চোখে ক্যাডিলাক দেখলাম।" "রাজকীয় দুর্গে ঢোকার পর আমাকে স্বাগত জানালেন প্রাসাদের পরিচালক মানসুর আল-শাহরি। মধ্যবয়স্ক এই ব্যক্তি প্রিন্স মোহাম্মদের খুবই প্রিয় ছিলেন।" "প্রিন্স মোহাম্মদকে মনে হলো আমার কাছে পড়ার চাইতে প্রাসাদের রক্ষীদের সাথে সময় কাটানোর ব্যাপারেই তার বেশি আগ্রহ। ভাইদের মধ্যে সে-ই বয়েসে সবচেয়ে বড় হওয়ায় সে যা খুশি তাই করতে পারে - এমনই মনে হতো।" "বয়েসে ছোট যে প্রিন্সরা, আমি তাদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারতাম। কিন্তু মোহাম্মদ সেখানে হাজির হলেই পরিস্থিতি হয়ে যেতো অন্য রকম।" বাদশা হবার আগে প্রিন্স সালমান ছিলেন রিয়াদের গভর্নর "আমার মনে আছে, আমার পাঠদানের সময় মোহাম্মদ একটা ওয়াকি-টকি ব্যবহার করতো - যা সে রক্ষীদের কোন একজনের কাছ থেকে ধার করেছিল। সে এটাকে ব্যবহার করতো আমাকে নিয়ে নানা রকম মন্তব্য করার জন্য, তার ভাই এবং প্রাসাদরক্ষীদেরকে জোক শোনানোর জন্য।" "একদিন মোহাম্মদ বললো, তার মা তাকে বলেছেন যে আমাকে দেখে নাকি 'একজন সত্যিকারের ভদ্রলোক' বলে মনে হয়। আমি এটা শুনে একটু থতমত খেয়ে গেলাম। কারণ আমার মনে পড়ে না যে কখনো আমি তাকে দেখেছি, যেহেতু সৌদি রাজপরিবারের মেয়েরা অপরিচিতদের সামনে আসে না। প্রাসাদে একমাত্র নারী যাকে আমি দেখেছিলাম, সে একজন ফিলিপিনো আয়া।" "আমাকে যে কেউ দেখছে এ ব্যাপারটা আমি আগে বুঝতে পারি নি। কিন্তু সৌদি সিংহাসনের ভবিষ্যৎ উত্তরাধিকারী তখন আমাকে দেয়ালে লাগানো কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরা দেখালেন।" "তার পর থেকে পড়ানোর সময় আমি আত্মসচেতন হয়ে গিয়েছিলাম।" "কিছুদিনের মধ্যেই মোহাম্মদ এবং তার ভাইদের আমার বেশ পছন্দ হয়ে গেল। তারা ছিল রাজপুত্র, এবং তাদের জগত ছিল অর্থ-বিত্ত-বিলাসে ভরা। কিন্তু তাদের সাথে আমার স্কুলের ছাত্রদের বিশেষ কোন তফাৎ ছিল না। তাদের জানার আগ্রহ ছিল কিন্তু খেলাধূলা করতেই বেশি ভালোবাসতো।" যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি রাষ্ট্রদূত প্রিন্স খালিদ "একদিন প্রাসাদের পরিচালক মানসুর আল-শাহরি আমাকে বললেন ভবিষ্যৎ রাজার সাথে দেখা করতে। কারণ তিনি তার সন্তানদের শিক্ষায় কতটা অগ্রগতি হলো তা জানতে চান।" "আমি ভাবলাম, প্রিন্স মোহাম্মদের দুষ্টামির ব্যাপারে কিছু করার এটা একটা সুযোগ হলো।" "আমি প্রিন্স সালমানের অফিসের সামনে অপেক্ষা করছিলাম। আমার পাশে দাঁড়ানো ছিলেন যুবরাজদের অন্যান্য শিক্ষকরা। মনে হলো, প্রাসাদের আদবকায়দা সম্পর্কে আমার চাইতে তারা বেশি ওয়াকিবহাল।" "প্রিন্স সালমান আসার সাথে সাথে তারা উঠে দাঁড়ালেন, এবং আমি দেখতে লাগলাম কিভাবে তারা রিয়াদের গভর্নরের সামনে মাথা নত করলেন, তার হাতে চুমু খেলেন, দ্রুতগতিতে প্রিন্সদের নিযে কিছু কথা বললেন এবং সামনে এগিয়ে গেলেন।" সম্প্রতি ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধ ও জামাল খাসোগজি হত্যা নিয়ে বিতর্কের কেন্দ্রে প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান "যখন আমার পালা এলো - আমি তাদের মতো মাথা নত করতে পারলাম না। আমি কখনো এটা করি নি। আমি আমার হাত বাড়িয়ে দিলাম এবং ভবিষ্যৎ রাজার সাথে করমর্দন করলাম।" "আমার মনে আছে প্রিন্স সালমানের মুখে ফুটে ওঠা বিস্ময়সূচক মৃদু হাসির কথা। কিন্তু তিনি ব্যাপ���রটা উপেক্ষা করেছিলেন।" "আমি তার সাথে কথা বলার সময় প্রিন্স মোহাম্মদের কথা তুলিনি। কারণ ততক্ষণে আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি যে আমি এ কাজ ছেড়ে দেবো এবং যুক্তরাজ্যে ফিরে যাবো।" "পরে মি. আল-শাহরি আমাকে রাজকীয় আদবকায়দা পালন করতে ব্যর্থ হবার জন্য আমাকে অনেক বকাঝকা করেছিলেন।" "আমার ছাত্রদের মধ্যে প্রিন্স মোহাম্মদ ছাড়া প্রিন্স খালিদ - যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি রাষ্ট্রদূত হয়েছেন। তবে অন্য প্রিন্সরা জনসমক্ষে ততটা পরিচিত নন।" "সৌদি রাজপুত্রদের শিক্ষাদানের এই সময়টা ছিল আমার জীবনের একটা অনন্য পর্ব।" সৌদি আরবের বিতর্কিত যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে কিছুদিন আগে পর্যন্তও খুব কম লোকই চিনতেন। +text: গ্রেপ্তার দুই কিশোরকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ। গাজীপুরের টঙ্গি পূর্ব থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ''একটি স্কুলের শিক্ষার্থী মেয়েটি নিজে টিকটক ভিডিও তৈরি করতো। সেই সূত্র ধরে বিভিন্ন জেলায় টিকটক ভিডিও তৈরি করে, এরকম বেশ কয়েকজনের সঙ্গে সামাজিক মাধ্যমে তার পরিচয় হয়।'' ''নিজেদের টিকটক সেলেব্রিটি পরিচয় দিয়ে কয়েকজন কিশোর টিকটকে কাজ করার কথা বলে মেয়েটিকে ঢাকায় ডেকে নেয়। এরপর গেণ্ডারিয়ার একটি বাসায় আটকে রেখে চারজন মিলে ধর্ষণ করে। '' বলছেন মি. চৌধুরী। মেয়েটির সন্ধান না পেয়ে তার মা টঙ্গির ওই থানায় একটি জিডি করেছিলেন। সেটার সূত্র ধরে মেয়েটিকে খুঁজতে শুরু করে পুলিশ। প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার হাতিরঝিলের মধুবাগ এলাকা থেকে মেয়েটিকে পুলিশ উদ্ধার করে। এরপর মেয়েটির কাছ থেকে বর্ণনা পেয়ে গেণ্ডারিয়ায় অভিযান চালিয়ে দুই কিশোরকে আটক করা হয়। এই দুই কিশোরের টিকটকে অনেক ফলোয়ার রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ধর্ষণের অভিযোগে আরও দুইজনকে পুলিশ খুঁজছে বলে জানিয়েছেন ওসি দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী। ভুক্তভোগী মেয়েটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে নতুন ধরনের করোনাভাইরাস ২০২০: করোনা, যুদ্ধ, বিক্ষোভসহ বছরের সাড়া ফেলা ঘটনাগুলো এমআইসিক্সের ভেতরে লুকিয়ে ছিলেন যে রুশ 'ডাবল এজেন্ট' নাটক-সিনেমায় পুলিশের চরিত্র কি কঠিন হয়ে উঠছে টিকটকে ভিডিও বানানোর কথা বলে এক কিশোরীকে ডেকে ���িয়ে দুইদিন আটকে রেখে গণধর্ষণের অভিযোগে দুই কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত দুই কিশোরও 'টিকটক সেলেব্রিটি' বলে পুলিশ জানিয়েছে। +text: সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় যে, একটি সংযোগ সড়কে লাল বাতি থাকা সত্ত্বেওে একটি সাদা ফোর হুইল ড্রাইভ গাড়ি অমান্য করে অতিক্রম করছে। তএ সময় গাড়িটি কর্নেল হল চালাচ্ছিলেন বলে বলা হয়েছে। পাকিস্তানের স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, পাকিস্তানে মার্কিন ডিফেন্স অ্যাটাচে কর্নেল ইমানুয়েল হলকে নেয়ার জন্য একটি বিমান পাঠিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু তাকে পাকিস্তান ছাড়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। এর আগে মার্কিন কর্মকর্তারা বলছিলেন, তাকে গ্রেপ্তার বা বিচার করা যাবে না, কারণ তার কূটনৈতিক অব্যাহতি রয়েছে। এই ঘটনা দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। গত ৭ই এপ্রিল ইসলামাবাদে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান ২২ বছর বয়সী আতিক বেগ। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় যে, একটি সংযোগ সড়কে লাল বাতি থাকা সত্ত্বেওে একটি সাদা ফোর হুইল ড্রাইভ গাড়ি অমান্য করে অতিক্রম করছে। তখন ওই মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় গাড়িটি কর্নেল হল চালাচ্ছিলেন বলে বলা হয়েছে। তবে এ সময় কর্নেল হল মদ্যপ অবস্থায় গাড়িটি চালাচ্ছিলেন বলে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে পাকিস্তানের গণমাধ্যমে, তা নাকচ করেছে পাকিস্তানে মার্কিন দূতাবাস। ইসলামাবাদের হাইকোর্টে কর্নেল হলের বিচারের দাবি তুলেছেন নিহত আতিক বেগের বাবা। শুক্রবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট রুল জারি করেছে যে, কর্নেল হল সম্পূর্ণভাবে কূটনৈতিক অব্যাহতি পাবেন না। ইতোমধ্যেই তার নাম ভ্রমণের কালো তালিকায় যোগ করা হয়েছে। এর মানে, তিনি পাকিস্তানের কোন বিমানবন্দর থেকেই দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। তবে এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি পাকিস্তান অথবা যুক্তরাষ্ট্রের কোন কর্মকর্তা। গত জানুয়ারিতে যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইট করেন যে, পাকিস্তান মিথ্যা আর ধোঁকা দিচ্ছে। সে মাসেই মার্কিন সরকার ঘোষণা দেয় যে, তারা পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ নিরাপত্তা সহায়তার প্রায় সবটাই কাটছাঁট করছে। কারণ দেশটি তাদের মাটিতে জঙ্গি নেটওয়ার্ক ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। দেশটি ঘোষণা দিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আর কোন গোয়েন্দা তথ্য বি���িময় করবে না। বিবিসির বাংলার আরো খবর: মসজিদে নারী উপস্থিতি: বাংলাদেশি কমিউনিটিতে বিতর্ক কোটা বাতিল: প্রজ্ঞাপন জারিতে বিলম্ব কি সরকারি কৌশল শিশু মৃত্যুর দায়ে অভিযুক্ত 'খুনী কুকুর' ঔরঙ্গাবাদে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা: মৃত্যু ও অগ্নিসংযোগ যুক্তরাষ্ট্রের একজন কূটনীতিককে দেশ ছাড়তে দেয়নি পাকিস্তান, কারণ তার বিরুদ্ধে সিগন্যাল অমান্য করে গাড়ি চালিয়ে একজন মোটরসাইকেল চালককে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। +text: এক হাজারের বেশি দোকানে বিক্রি হয় কুকুর ও বিড়ালের মাংস হ্যানয় পিপলস কমিটি বলছে, হ্যানয় যে একটি সভ্য এবং আধুনিক রাজধানী, সেই ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে লোকজন কুকুরের মাংস খাওয়ার কারণে। এছাড়া কুকুরের মাংস খেলে জলাতংক বা লেপটোপিরোসিসের মতো রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলেও তারা সতর্ক করে দিয়েছে। হ্যানয়ের প্রায় ১০০০ দোকানে এখনো কুকুর এবং বিড়ালের মাংস বিক্রি হয়। বিড়ালের মাংস খাওয়া বন্ধেরও আহ্বান জানিয়েছে হ্যানয় পিপলস কমিটি। ভিয়েতনামে কুকুরের মাংসের মতো অত জনপ্রিয় নয় বিড়ালের মাংস। কিন্তু তারপরও অনেক জায়গায় বিড়ালের মাংস কিনতে পাওয়া যায়। এসব প্রাণীকে যে অনেক সময় নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয় সেকথা উল্লেখ করেছে হ্যানয় কর্তৃপক্ষ। ভিয়েতনামে কুকুরের মাংস খাওয়া বাদ দিচ্ছেন অনেকে হ্যানয়ে আনুমানিক ৪, ৯০,০০০ কুকুর ও বিড়াল আছে। এদের বেশিরভাগই পোষা প্রাণী। আরও পড়ুন: খ্রিস্টান যাজকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে সরব সন্ন্যাসিনীরা বাংলাদেশে গুজবের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামছে সরকার ছিনতাইকারী ধরে পুরস্কার পেলেন ঢাকার যে তরুণী কুকুরের মাংস খাওয়া নিয়ে ভিয়েতনামের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গীতে সাম্প্রতিককালে অনেক পরিবর্তন এসেছে। বহু মানুষই এখন আর কুকুরের মাংস খাওয়া পছন্দ করে না, বলছেন বিবিসির ভিয়েতনামী ভাষা বিভাগের সাংবাদিক লিন নগুয়েন। সোশ্যাল মিডিয়ায় হ্যানয় কর্তৃপক্ষের এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেক মানুষ। কিন্তু অনেকে বলেছেন, ভিয়েতনামের মানুষ সহজে কুকুরের মাংস খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করবে বলে তারা মনে করেন না। ফেসবুকে ডাং নগোক কোয়াং নামে একজন বলেছেন, কুকুরের মাংস পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা ঠিক হবে না। কারণ সেটা হবে মানুষের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ। পরিবর্তে তিনি কুকুরের মাংসের ওপর বেশি হারে কর বসানো এবং ���ুধু নির্দিষ্ট কয়েকটি স্থানে কুকুরের মাংস বিক্রির পরামর্শ দিয়েছেন। ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ের কর্তৃপক্ষ কুকুরের মাংস না খাওয়ার জন্য নগরীর বাসিন্দাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। কারণ তারা মনে করছেন, লোকজন কুকুরের মাংস খেলে সেটা নগরীর ভাবমূর্তি ক্ষু্ন্ন করে। আর কুকুরের মাংস খেলে জলাতংক ছড়ানোরও আশংকা আছে। +text: ওয়েবসাইটের ক্লোন তৈরি করেও ভুয়া খবর ছড়ানো হচ্ছে। এমন অবস্থায় আগামী মাসে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনের আগে ভুয়া খবর ছড়িয়ে সুবিধা নেয়ার বা সহিংসতা সৃষ্টির প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে বলে আশংকা করছেন অনেকে। কিন্তু নির্বাচনের আগে ভুয়া খবরের এই ঝুঁকি কতটা ব্যাপক? আর এ ঝুঁকি এড়াতে করণীয়ই বা কী? ভুয়া খবর ও রাজনীতি গত ১৪ই নভেম্বর ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপি'র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে। সেদিন দলের নির্বাচনী মনোনয়নপত্র সংগ্রহের জন্য নেতা-কর্মীরা জড়ো হয়েছিলেন দলীয় কার্যালয়ের সামনে। সংঘর্ষের পরদিন থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুলিশের গাড়িতে এক যুবক অগ্নিসংযোগ করছেন এরকম একটি ছবি দুইভাবে ভাইরাল হয়। একটি ছবিতে যুবকের পরিচয় দেয়া হয় ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে। অন্যটিতে ছাত্রদল নেতা হিসেবে। যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দেয়। এর মাস তিনেক আগে ঢাকায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করেও নানারকম গুজব, ভুয়া খবর বা ছবি অনলাইনে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিলো। এসব ভুয়া প্রচারণার পেছনে উদ্দেশ্যটা খুবই পরিস্কার। পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে সহিংসতা উস্কে দেয়া কিংবা ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা। কিন্তু বাংলাদেশে এ ধরণের প্রবণতা দিনদিন কেন বাড়ছে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন বলেন, "প্রযুক্তি এখন মানুষের কাছে অনেক সহজলভ্য। যাদের দক্ষতা আছে তারা চাইলেই একজনের দেহে আরেকজনের ছবি বসিয়ে দিতে পারেন।" তবে এসব কাজ করে ফায়দা নেয়ার সুযোগ স্বাভাবিক সময়ে কম থাকে বলে যখন দেশে কোন বড় ঘটনা ঘটে তখন ভুয়া প্রচারণার প্রবণতা বেড়ে যায় বলে মনে করেন মিজ নাসরিন। আরো পড়তে পারেন: ভুয়া ওয়েবসাইট কীভাবে চিনবেন? সমঝোতা সত্ত্বেও যুদ্ধ চলছে ইয়েমেনে সাপের বিষ শরীরে নিয়ে ডায়েরি লিখে গেছেন যিনি বাংলাদেশের যে নারী বিবিসির ১০০ নারীর তালিকায় মার্কিন নির্বাচনে ভুয়া খবর তৈরি করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার অভিযোগ নিয়ে এখনো বিতর্ক হয়। জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভুয়া খবরের ঝুঁকি কতটা? বাংলাদেশে এখন চলছে নির্বাচনী মৌসুম। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলছে জোর প্রস্তুতি, প্রতিযোগিতা। কখনো কখনো উত্তেজনাকর পরিস্থিতিও সৃষ্টি হচ্ছে। এমন অবস্থায় ভুয়া খবরের প্রবণতা আরো বাড়ার আশংকা করছেন গীতি আরা নাসরিন। "নির্বাচন এমন একটা অবস্থা যেখানে এমনিতেই টেনশন অত্যন্ত উচ্চ পর্যায়ে থাকে। এমন সময় প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীকে ঘায়েল করতে বা সুনামহানি করতে কিংবা নির্দিষ্ট কোন প্রার্থীকে মহান বানাতে ভুয়া খবর ফেসবুকে ছড়ানো হতে পারে। অতীতে এমন অনেক উদাহারণ আছে।'' নির্বাচনের সময় ভোট কেন্দ্র সম্পর্কে ভুল খবর দিয়ে, কোন বিশেষ জনগোষ্ঠী বা ভোটারদের সম্পর্কে গুজব ছড়িয়ে সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করা হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন মিজ নাসরিন। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান অনলাইন ব্যবহারকারীদের অধিকাংশেরই তথ্য যাচাইয়ের দক্ষতা নেই। ভুয়া খবর এড়াতে কী সতর্কতা নেয়া যায়? বাংলাদেশে খবরের সত্যতা যাচাইয়ের কাজ করে এমন একটি প্রতিষ্ঠান বিডি ফ্যাক্ট চেক। প্রতিষ্ঠানটির সহপ্রতিষ্ঠাতা কদরুদ্দিন শিশির সাধারণ কিছু সতর্কতা অবলম্বনের উপদেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: ভুয়া খবর ঘিরে বাংলাদেশে পাঁচটি বড় ঘটনা বিবিসি জরিপ: কেন মানুষ ভুয়া খবর ছড়াচ্ছে ভুয়া খবর: ফেসবুকে রাজনীতি নিয়ে ছড়িয়ে দেয়া গুজব গুগলে সার্চ দিয়েও কোন ছবি বা খবরের সত্যতা যাচাই করা যায় বাংলাদেশে অনলাইনে কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া খবর ছড়িয়ে হামলা কিংবা উত্তেজনা সৃষ্টির বেশকিছু আলোচিত ঘটনা ঘটেছে এর আগে। +text: স্টিভ ব্যানন হোয়াইট হাউজে শুক্রবারই যে ছিল তার শেষ দিন, সেকথা নিশ্চিত করেছেন প্রেস সেক্রেটারি সারা স্যান্ডার্স। চিফ অব স্টাফ জন কেলির সাথে আলোচনার পরই প্রেসিডেন্টের 'চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট' পদটি ছাড়তে হল মি. ব্যাননকে। শার্লটসভিলে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের মিছিলে কিছু 'ভাল মানুষও' ছিল, এমন বক্তব্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন বিশ্বজুড়ে সমালোচিত হচ্ছেন, সেই প্রেক্ষা��টে চাকরী হারালেন মি. ব্যানন। অথচ ক্ষমতায় আসার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ডানপন্থী জাতীয়তাবাদী ব্যাননের জন্যেই এই পদটি সৃষ্টি করেছিলেন। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় 'আমেরিকা ফার্স্ট' দর্শনকে একটি গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে নিয়ে যাবার ক্ষেত্রে এই গোল্ডম্যান স্যাশ ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার ব্যাননের বড় ভূমিকা ছিল। ট্রাম্পের জয়ের অন্যতম কারিগর বলেও মনে করা হয় মি. ব্যাননকে। কিন্তু সমালোচকদের অভিযোগ ছিল যে, ব্যানন এন্টি-সেমেটিক এবং শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীদের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন। তিনি হোয়াইট হাউজের অন্য পরামর্শক এবং ট্রাম্প পরিবারের সাথেও দ্বন্দ্বে জড়িয়েছিলেন বলে শোনা যায়। রিপাবলিকান দলের কয়েকজনের সাথেও তৈরি হয়েছিল শত্রুতা। সেই সাথে মতে মিলছিলোনা হোয়াইট হাউজের শীর্ষ কর্মকর্তা ম্যাক মাস্টার এবং জেনারেল কেলির সাথেও। প্রেসিডেন্টের জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিলের উপদেষ্টা গ্যারি কোন, কন্যা ইভাঙ্কা ট্রাম্প এবং তার স্বামী জ্যারেড কুশনারও মি. ব্যাননকে কিছু ক্ষেত্রে হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছিলেন। উগ্র ডানপন্থী সংবাদমাধ্যম ব্রাইবার্ট নিউজের সাবেক প্রধান ব্যানন তার পুরনো কর্মক্ষেত্রে ফিরে যাচ্ছেন জানিয়ে বলেছেন, তিনি বরাবরের মতোই ট্রাম্পের পক্ষে থেকে তার রাজনীতি, বাণিজ্য আর সংবাদমাধ্যমের শত্রুদের মোকাবিলা করবেন। ব্যাননের চলে যাবার মধ্য দিয়ে হোয়াইট হাউজের অস্থিতিশীলতা আরও প্রকট হল। এর আগে কেবল জুলাই মাসেই ট্রাম্প প্রশাসন থেকে চলে যেতে হয় যোগাযোগ উপদেষ্টা অ্যান্থনি স্কারামুচি, চিফ অফ স্টাফ রায়ান্স প্রিবাস এবং মুখপাত্র শন স্পাইসারকে। আর বছরের শুরুতে চাকরি হারান এফবিআই ডিরেক্টর জেমস কোমি এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন। সম্পর্কিত খবর: পদচ্যুত হলেন ট্রাম্পের গণমাধ্যম প্রধান অ্যান্থনি স্কারামুচি চিফ অব স্টাফ বদলালেন ট্রাম্প, জানালেন টুইট করে হোয়াইট হাউজ মুখপাত্র শন স্পাইসারের পদত্যাগ এফবিআই প্রধানকে বরখাস্ত করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনের পদত্যাগ ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিদের বরখাস্তের তালিকায় এবার যুক্ত হল স্টিভ ব্যাননের নাম। +text: উহানে হাসপাতাল তৈরির কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে এবং কর্মীরা আশা করছেন যে ছয় দিনে এটি শেষ হবে। বর্তমানে দেশটিতে ১২শর বেশি মানুষে এতে আক্রান্ত রয়েছে এবং ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সংক্রমণ শুরু হয় উহান শহরে যেখানে প্রায় এক কোটি ১০ লাখ মানুষের বাস। শহরটির হাসপাতালগুলোতে উদ্বিগ্ন বাসিন্দাদের উপচে পড়া ভীর এবং ফার্মেসিগুলোতে ওষুধের সংকট তৈরি হয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম বলছে, নতুন হাসপাতালে এক হাজার শয্যা থাকবে। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম অনলাইনে যে ভিডিও পোস্ট করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে যে, খনন যন্ত্র এরইমধ্যে ওই স্থানে পৌঁছে গেছে। পুরো এলাকাটি ২৫ হাজার বর্গমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। ২০০৩ সালে বেইজিংয়ে সার্স ভাইরাস মোকাবেলা করতে স্থাপিত আরেকটি হাসপাতালের আদলে এই হাসপাতালটি তৈরি করা হচ্ছে। "এটা মূলত রোগ-অন্তরণ বা রোগীদের আলাদা করে রাখার জন্য একটি হাসপাতাল যেখানে সংক্রমণের শিকার রোগীদের পাঠানো হবে যেখানে সুরক্ষা এবং জীবাণু প্রতিরোধী সরঞ্জাম থাকবে," বলেন হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গ্লোবাল হেলথ এন্ড সোশ্যাল মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক জোয়ান কাউফম্যান। চীন ছয়দিনে কিভাবে হাসপাতাল বানাবে? ২০০৩ সালে বেইজিংয়ে সার্স ভাইরাস মোকাবেলা করতে স্থাপিত আরেকটি হাসপাতালের আদলে এই হাসপাতালটি তৈরি করা হচ্ছে। "চীনের সাধারণত খুব দ্রুত জিনিসপত্র তৈরির রেকর্ড রয়েছে এমনকি এ ধরণের বিশাল বিশাল প্রকল্পের ক্ষেত্রেও," বলেন পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক কাউন্সিলের গ্লোবাল হেলথ এর জ্যেষ্ঠ ফেলো ইয়াংঝং হুয়াং। তিনি বলেন যে, ২০০৩ সালে বেইজিংয়ের হাসপাতালটি সাত দিনে তৈরি করা হয়েছিল। তাই এবার মনে হচ্ছে নির্মাণকারী দলটি সেই রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলতে চাইছে। বেইজিংয়ের হাসপাতালের মতোই, উহান সেন্টারটিও আগে থেকেই নির্মিত ভবনে তৈরি করা হবে। "এই কর্তৃত্ববাদী দেশটি শীর্ষ থেকে নিচে বা টপ-ডাউন মোবিলাইজেশন পদ্ধতি অনুসরণ করে থাকে। যার কারণে তারা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এড়িয়ে এবং আর্থিক সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে তাদের সব পুঁজি নির্দিষ্ট দিকে নিয়োগ করতে পারে।" মিস্টার হুয়াং বলেন, ঠিক সময়ে কাজ শেষ করতে সারা দেশ থেকে প্রকৌশলীদের এখানে নিয়ে আসা হতে পারে। "প্রকৌশলই হচ্ছে সেই কাজ যাতে চীন খুবই ভাল। দ্রুত গতিতে আকাশচুম্বী ভবন তৈরির রেকর্ড রয়েছে তাদের। এটা পশ্চিমাদের জন্য চিন্তা করাটাই কঠিন। এটা সম্ভব," তিনি বলেন। আর চিকিৎসা সরঞ্জামাদির কথা বলতে গেলে, উহান সেগুলো অ���্য হাসপাতাল থেকে আনতে পারে কিংবা সরাসরি কারখানা থেকেও অর্ডার করতে পারে। আরো পড়তে পারেন: সদা পরিবর্তনশীল করোনাভাইরাস কতটা বিপজ্জনক? ভাইরাস আতঙ্কে অবরুদ্ধ একের পর এক চীনা শহর মাস্ক পরে কি ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানো যায়? করোনাভাইরাসের উৎপত্তি কোথায়, কেন এতো প্রাণঘাতী এর আগে ২০০৩ সালে বেইজিংয়ে সাত দিনে একটি হাসপাতাল বানিয়েছিল চীন। শুক্রবার, গ্লোবাল টাইমস জানায়, পিপলস লিবারেশন আর্মি থেকে ১৫০ জন চিকিৎসাকর্মী উহানে পৌঁছেছে। তবে নতুন হাসপাতাল তৈরির পর তারা সেখানে কাজ করবে কিনা সে বিষয়ে কিছু নিশ্চিত করা হয়নি। সার্স মহামারির সময় কী ঘটেছিল? ২০০৩ সালে সার্সের উপসর্গে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য বেইজিংয়ে শিয়াওটাংশান হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছিল। সেটা তৈরি করা হয়েছিল সাত দিনে, যা বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত হাসপাতাল তৈরির রেকর্ড ভেঙ্গেছিল বলে ধারণা করা হয়। চায়না ডট কম ডট সিএন জানায়, ঠিক সময়ে কাজ শেষ করার জন্য প্রায় ৪ হাজার মানুষ দিন রাত কাজ করেছিল। এরমধ্যে একটি এক্স-রে কক্ষ, সিটি কক্ষ, নিবিড় পর্যবেক্ষণ ইউনিট এবং ল্যাবরেটরি রয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে আলাদা পায়খানা ছিল। দুই মাসের মধ্যে সেখানে দেশটিতে সার্স আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এক-সপ্তমাংশকে ভর্তি করা হয়েছিল যাকে দেশটির সংবাদ মাধ্যম "চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে বিস্ময়কর ঘটনা" বলে উল্লেখ করেছিল। সার্সে আক্রান্তের পর চিকিৎসা নিয়ে সবার শেষ শিয়াংটাংশান হাসপাতাল ছাড়েন এক নারী মিস কাউফম্যান বলেন: "স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এর নির্দেশ দেয়া হয়েছিল এবং নার্স ও অন্যান্য চিকিৎসকদের দেশটির অন্য হাসপাতালগুলো থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল ওই হাসপাতালে কাজ করতে। তাদেরকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল যেখানে কিভাবে সংক্রামক রোগ মোকাবেলা করতে হবে এবং সার্স সনাক্তকরণ এবং সেগুলোকে আলাদা করার কঠোর ও নির্দিষ্ট উপায় উল্লেখ করা হয়েছিল।" তিনি বলেন যে, সার্স মহামারির সময় ব্যয়ভার স্থানীয়ভাবে মেটানো হলেও রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকেও প্রচুর পরিমাণ ভর্তুকি দেয়া হয়েছিল যা দিয়ে কর্মকর্তাদের বেতন ও নির্মাণ কাজে ব্যয় করা হয়। "আমার মনে হয় না যে এর ব্যয়ভার উহান সরকারের উপর পড়বে কারণ এটা এখন সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে," বলেন মিস কাউফম���যান। মিস্টার হুয়াংয়ের মতে, হাসপাতালটি "মহামারি শেষ হয়ে যাওয়ার পরে চুপিসারে পরিত্যাগ করা হয়েছিল।" করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য উহান শহরে ছয় দিনে একটি হাসপাতাল তৈরির কথা জানিয়েছে চীন। +text: জো ম্যাকসোরলি বলছেন বহুমূত্রের জন্য ওষুধ খাওয়া বন্ধ করতে পেরে তিনি বিরাট স্বস্তিবোধ করছেন। ইংল্যাণ্ডে বেশ কিছু রোগীর ওপর পরীক্ষা চালিয়ে গবেষকরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। তারা বলছেন বহুমূত্র রোগের জন্য নিয়মিত ওষুধ খাওয়া বন্ধ রাখতে এবং রোগ ঠেকিয়ে রাখতে এই পদ্ধতি একটা সমাধানের পথ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন আগে ধারণা করা হতো টাইপ-টু ডায়াবেটিস যা জীবনযাপনের কারণে হয়, তা একবার হলে সেই রোগে সারা জীবন ভুগতে হবে এবং দিনে দিনে তা আরও খারাপের দিকে যাবে। নতুন গবেষণা সেই ধারণাকে পাল্টে দিয়েছে। যুক্তরাজ্যে প্রতি ১৬জন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন টাইপ-টু বহুমূত্র রোগের শিকার। টাইপ-টু ধরনের বহুমূত্র রোগে শরীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণবিহীন হয়ে পড়ে এবং এর থেকে নানাধরনের জটিলতা তৈরি হয়, যেমন দৃষ্টির সমস্যা, হৃদরোগ এবং অঙ্গহানি। বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারেন: হার্ট অ্যাটাক: যে বিষয়গুলো কখনো উপেক্ষা করবেন না হার্ট অ্যাটাক: যেসব স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অবহেলা নয় মিষ্টি কি আসলেই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর? 'আমি ১২ সপ্তাহে ১৭ কিলো ওজন কমিয়েছি' ৫৮ বছর বয়স্ক জো ম্যাকসোরলি থাকেন স্কটল্যাণ্ডের গ্লাসগো শহরের কাছে। ছয় বছর আগে তার টাইপ-টু ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। তাকে চিকিৎসক দুরকম ওষুধ দেবার পরেও তিনি তার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। বিবিসি নিউজকে তিনি বলেন: ''আমার মনে হয়েছিল এখন সারা জীবন যতদিন বাঁচব আমাকে ওষুধ খেয়ে যেতে হবে।'' প্রথমদিকে তিনি যখন প্রতিদিন কম ক্যালরির তরল খাবার পরীক্ষামূলকভাবে খেতে শুরু করেছিলেন, তার খুব কষ্ট হয়েছিল। ব্যাপারটা খুব কঠিন মনে হয়েছিল । কিছু অল্পদিনের মধ্যেই তিনি সুফল পেতে শুরু করেন। ১২ সপ্তাহের মধ্যে তার ওজন ৯০ কেজি থেকে ৭৩ কেজিতে নেমে আসে। মি: ম্যাকসোরলি বলছেন এরপর যখন তিনি আবার তরল ছেড়ে সবরকম খাবার শুরু করলেন তখনই ছিল সবচেয়ে কঠিন সময়। ''শুধু শেকের মত তরল খেয়ে থাকাটা ছিল আমার জন্য যাত্রার প্রথম ধাপ।" "তবে নিজের ভাগ্য নিজের হাতে তুলে নেবার জন্য সেটা আমাকে পরবর্তী ধাপ�� পৌঁছে দিয়েছিল।" এর দুবছর পর জো ম্যাকসোরলির ওজন ৭৭ কেজিতে স্থিতিশীল হয়। এখন জো প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করেন এবং অবসরগ্রহণের পর মানুষকে জীবনযাপনের ধারা সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেবার কথা চিন্তাভাবনা করছেন। স্কটল্যাণ্ডে মি: ম্যাকসোরলি সহ ১৪৯ জন ১২ থেকে ৩০ সপ্তাহ কম ক্যালরির খাবার খাওয়ার এক কর্মসূচিতে অংশ নেন। ওজন কমানোর জন্য তাদের কম ক্যালরির শুধু তরল খাবার এবং পানীয় খেতে হতো। ওজন কমার পর কয়েক সপ্তাহ ধরে তাদের ধীরে ধীরে আবার সাধারণ খাবার খেতে দেয়া হয়। এক বছর পর এদের মধ্যে ৬৯ জন রোগমুক্ত হন। মাত্র ৪ শতাংশ রোগীকে শর্করা কমাতে ওষুধের সাহায্য নিতে হয়। আর দুবছর পর এদের মধ্যে ৫৩জন রোগমুক্ত থেকে যান এবং তাদের কোনরকম ওষুধ খেতে হয় না। প্রতি মাসে তাদের সঙ্গে বৈঠক করে কীভাবে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা যায় সে বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হয়। তাদের ওজন যদি আবার বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়, তাদের সাহায্য করার জন্য আবার তরল খাবার খেয়ে ওজন কমানোর কর্মসূচিতে যোগ দেবার জন্য উৎসাহিত করা হয়। 'ওজন কমানোই কি সবকিছু' এই গবেষণার সঙ্গে জড়িত অধ্যাপক রয় টেইলর বলছেন: ''এই ফলাফল বহুমূত্র রোগীদের জন্য খুবই আশাব্যঞ্জক। এতদিন মনে করা হতো টাইপ-টু ডায়াবেটিস একবার ধরলে আর ফেরার পথ নেই- সেই যুগের ওপর এবার যবনিকা ফেলার পথ খুলে গেছে।'' তারা বলছেন যারা ওজন কমিয়ে বহুমূত্র রোগ ঠেকানোর কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন তারা গড়ে ১০ কেজির মত ওজন কমিয়েছেন এবং তা ধরে রাখার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু লণ্ডনে কিংস কলেজের ড: নিকোলা গেস বলছেন ওজন কমানোটাই যে একমাত্র পথ তা এখুনি বলা যাবে না। ''কারণ খুব কম সংখ্যক হলেও কয়েকজন রোগীর ক্ষেত্রে এই রোগ আবার ফিরে এসেছে।'' ''সেটা কেন হয়েছে তা বুঝতে আরও গবেষণার প্রয়োজন।'' ''হয়ত এমনটা হয়ে থাকতে পারে, ওজন কমানো তাদের জন্য একশভাগ করেনি যারা টাইপ-টু ডায়াবেটিসের রোগী ছিলেন অনেকদিন ধরে অথবা তাদের বংশগত জিন এক্ষেত্রে একটা ভূমিকা রেখেছে।'' তবে টাইপ-টু ডায়াবেটিস একটি জটিল রোগ। এই রোগের নিরাময় বা প্রতিরোধ যে সকলের জন্য একভাবে কাজ করবে এক্ষুণি তা বলা ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাজ্যের ডায়াবেটিস ইউকে সংস্থা যারা এই গবেষণার জন্য অর্থায়ন করেছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে তিন মাস প্রতিদিন ৮৫০ ক্যালরিযুক্ত খাবার গেলে এবং তাতে ওজন কমাতে পারলে অন্তত দুই বছর টাইপ-টু ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। +text: গণমাধ্যমে খবর বের হয় যে ত্রিপুরা বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণের জন্য ভারত বাংলাদেশের কাছে জমি চেয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশ এবং ভারতের গণমাধ্যমে এই মর্মে খবর বের হয় যে ত্রিপুরা বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণের জন্য ভারত বাংলাদেশের কাছে জমি চেয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে নানা ধরণের পরস্পরবিরোধী খবরও বের হয়। ভারত কি আসলেই বাংলাদেশকে এরকম কোন প্রস্তাব দিয়েছে? এ ব্যাপারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, "ভারত আমাদের কাছে কোন জমি চায়নি। যে খবরটি আপনারা জেনেছেন সেটা সম্পূর্ণ অসত্য।" শাহরিয়ার আলম জানিয়েছেন, "ভারত মূলত যেটা চেয়েছে, সেটা হচ্ছে ত্রিপুরা বিমানবন্দরের রানওয়েতে লাইটের কমপ্লিট ফেইজ পূরণ করতে বাংলাদেশের অংশে কিছু লাইট বসাতে।" বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। "যেকোনো বিমানবন্দরের রানওয়েতে বিমান ওঠানামার নির্দেশনা দেয়ার জন্য লাইটের একটি কমপ্লিট ফেইজের প্রয়োজন হয়। যেখানে কয়েক ফুট অন্তর অন্তর প্রায় ৫০টির মতো লাইট বসানো হয়। একে বলা হয় ক্যাট আই লাইট।" মিঃ আলম বলেন, "লাইটের এই কমপ্লিট প্যানেলের যে দৈর্ঘ্য সেটা বসানোর মতো জায়গা ভারতের অংশে না থাকায় তারা বাকি কিছু লাইট বাংলাদেশের অংশে বসানোর অনুরোধ করে একটি প্রস্তাবনা দিয়েছে।" বিমানবন্দরের রানওয়েতে বসানো ক্যাট আই লাইট সম্প্রতি ভারত এ নিয়ে একটি অনুরোধপত্র পাঠিয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, "ভারত লাইট বসানোর বাইরে রানওয়ে সম্প্রসারণের জন্য জমি বা কোন অবকাঠামো নির্মাণের জন্য কিছু চায়নি।" "এসব লাইটের বেশিরভাগ ভারতেই অংশেই বসবে, এরমধ্যে কিছু লাইট আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে বাংলাদেশের অংশে বসানো হতে পারে।" তিনি জানিয়েছেন, বর্তমানে বাংলাদেশের সিভিল এভিয়েশনকে ভারতের এই অনুরোধ যাচাই বাছাই করে তাদের মতামতের জন্য বলা হয়েছে। সিভিল এভিয়েশনের মতামতের ভিত্তিতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটিতে আলাপ আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আরও পড়তে পারেন: ড্রোন কীভাবে বিমানবন্দর অচল করে দিল কেন আর কীভাবে লর্ড কার্লাইলকে ফেরত পাঠাল দিল্লি? সংস্কার করা হবে নেপালের ঝুঁকিপূর্ণ ত্রিভুবন বিমানবন্দর রানওয়ে। মিস্টার আলম বলেন, "ভারতের থেকে কোন প্রস্তাব এলেই এটা নিয়ে অনেক বাড়াবাড়ি করা হয়। অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয়। একটি চক্র সবসময় একে তাদের সস্তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের চেষ্টা করে।" "কিন্তু সরকারের নীতি হল, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব এবং মর্যাদা সমুন্নত রেখে প্রতিবেশী দেশের সাথে ভাল সম্পর্কের ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়া।" তিনি মনে করেন সরকারের এমন নীতির কারণেই বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও যাতায়াতে অনেক ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। "আর সব কিছুই সম্পন্ন হয়েছে একটি সুনির্দিষ্ট কার্যপ্রণালীর মাধ্যমে। এই লাইট বসানোর বিষয়টিও সেভাবেই করা হবে।" বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ত্রিপুরা বিমানবন্দর সম্প্রসারণের জন্য ভারত, বাংলাদেশের কাছে জমি চেয়েছে বলে যে কথা বলা হচ্ছে, তা জোর গলায় অস্বীকার করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। +text: বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ভবন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের প্রশাসন শাখা থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এমন পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ই-মেইলে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, "ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে কোনো কোনো ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া তাদের চ্যানেলে এবং কোনো কোনো প্রিন্ট মিডিয়া তাদের পত্রিকায় বিচারাধীন মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন/স্ক্রল করছে, যা একেবারেই অনভিপ্রেত"। "এমতাবস্থায়, বিচারাধীন কোনো বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন/স্ক্রল করা হতে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো"। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার মো: গোলাম রাব্বানী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিটি গণমাধ্যমে প্রচারের জন্য পাঠিয়েছেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান ভুঁইয়া। কেন এই নির্দেশনা? সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কর্মকর্তা ও মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেন, "আদালতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় কিংবা আদালতের ওপর মানুষের আস্থাকে প্রভাবিত করতে পারে, এমন কিছু যাতে না হয় সেটিই আসলে বলা হয়েছে"। কিন্তু জনস্বার্থে প্রতিনিয়ত যেসব রিট বা মামলা হয় কিংবা আলোচিত যেসব ঘটনার বিচারিক প্রক্রিয়ায় মানুষের আগ্রহ থাকে, সেসব মামলার ক্ষেত্রে কী হবে - এমন এক প্রশ্নে মিস্টার রহমান বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি। জনস্বার্থ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় প্রায়ই আদালতে তুলে ধরেন আইনজীবী মনজিল মোরশেদ। মিস্টার মোরশেদ বলছেন যে তাঁর ধারণা হাইকোর্ট বিভাগে একটি মামলার বিষয়ে বৃহস্পতিবার কিছু টেলিভিশন চ্যানেল ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে ব্রেকিং নিউজ কিংবা স্ক্রল আকারে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তার প্রেক্ষাপটেই আদালতের নির্দেশনাটি এসেছে। তিনি বলেন, একটি বিচারাধীন বিষয়ে আপিল বিভাগ থেকে কোনো আদেশ বা রায় আসার আগেই নানা সংবাদ প্রচার করেছে কয়েকটি টিভি ও অনলাইন, যেটি মোটেই উচিত হয়নি। তিনি আরও বলেন, আদালত আদেশ দেয়ার আগেই সংবাদ প্রচার অনেকের কাছে আদালতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা বলেই প্রতীয়মান হতে পারে। অর্থাৎ গণমাধ্যম মামলার খবর মানুষকে জানাতে পারে, কিন্তু আদালতের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে এমন কোনো সংবাদ দিতে পারে না, যা সেই সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারে বলে প্রতীয়মান হয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা বৃহস্পতিবারের ঘটনা আদালতের সূত্রগুলো জানিয়েছে, সকালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চে গিয়েছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র আইনজীবী। তখন সেখানে অন্য মামলার শুনানি চলছিলো। অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে আপিল বিভাগে গিয়েছিলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ। মিস্টার আরিফ পরে সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে চলা একটি মামলার বিষয়ে আপিল বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, "আমরা সবাই সমস্বরে এটাকে (আপিল বিভাগের কাছে অ্যাটর্নি জেনারেলের আবেদন) সমর্থন জানিয়েছি। কারণ অস্বাভাবিক আদেশে আদালতের যে ইমেজ ও মর্যাদা, তা ব্যাহত হয়, ক্ষুণ্ন হয় এবং অবনমিত হয়। সেজন্য আমরা আদালতের কাছে আবেদন করেছি যে বিষয়টা রাষ্ট্রপতির কাছে বা আদালত যেভাবে বিবেচনা করেন, সেভাবে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেছি"। বিষয়টি নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিবিসির কাছে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে দিন শেষে সুপ্রিম কোর্ট থেকে বিচারাধীন বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিটি পাঠানো হয়। বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট বিচারাধীন মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে খবর প্রকাশ থেকে বিরত থাকতে দেশটির গণমাধ্যমকে পরামর্শ দিয়েছে। +text: তুলনামূলক সস্তা ও নিরাপদ ���াহন হওয়ায় অনেক মানুষ ট্রেনে ভ্রমণ করেন যাত্রীদের সহায়তায় রক্ত আর শরীর থেকে কাঁচের টুকরো সরাতে পারলেও প্রচণ্ড আতঙ্ক নিয়ে বাকি পথটুকু তিনি আইলে বসে ঢাকায় পৌঁছান। ''এতো ভয় পেয়েছিলাম যে এরপর থেকে আমি আর ট্রেনের জানালার কাছে বসতে পারি না। অকারণে কোন অমানুষ ছাড়া কারো পক্ষে এভাবে ট্রেনে ঢিল ছোড়া সম্ভব নয়,'' বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন মুনমুন চৌধুরী। বাংলাদেশে চলন্ত ট্রেনে প্রায়শই পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটে, ফলে আহত হয় যাত্রীরা। এমনকি জানালা বন্ধ রেখেও রেহাই পান না যাত্রীরা - এসব ক্ষেত্রে ছুড়ে দেয়া পাথরের কারণে জানালার কাঁচ ফেটে আহত হন যাত্রীরা। এ রকম পাথর ছোড়ার ঘটনায় যাত্রী মৃত্যু পর্যন্ত ঘটেছে বলেও খবর রয়েছে। সম্প্রতি জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরিন শারমীন চৌধুরী ট্রেনে যখন ভ্রমণ করছিলেন, তখন তাতে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিরা ঢিল ছুড়েছিলেন, ফলে ট্রেনটির কাচ ভেঙ্গে যায়। স্পিকার অবশ্য ওই ঘটনায় নিরাপদেই ছিলেন। রোববার রাতে পদ্মা ট্রেনে ছোড়া পাথরে চার বছরের একটি শিশু আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছে যে রেলপথমন্ত্রী গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পর্যন্ত দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবারই দেয়া ওই বিবৃতিতে মন্ত্রী নূরুল ইসলাম বলেছেন, দুষ্কৃতকারীরা চলন্ত ট্রেনে ঢিল মেরে নিরাপদ বাহনকে অনিরাপদ করে তুলছে। যাতে ট্রেনের যেমন ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি মানুষের জীবনও বিপন্ন হচ্ছে। এ ধরণের অপরাধীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে হস্তান্তরের জন্য তিনি আহবান জানিয়েছেন। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের হিসাবে, গত পাঁচ বছরে ট্রেনে পাথর ছুড়ে ২,০০০ বেশি জানালা-দরজা ভাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে। আরো পড়ুন: 'একজন নারী কিভাবে ট্রেন চালাবে' এ প্রশ্ন শুনেই পথ চলেন ট্রেনচালক সালমা খাতুন ছুটন্ত ট্রেনের সঙ্গে 'সেলফি' তুলতে গিয়ে যা ঘটলো ট্রেনে ছোড়া ঢিলে যাত্রী নিহতের ঘটনা ঘটেছে কারা-কেন ট্রেনে ঢিল ছোড়ে? ২০১৩ সালে চলন্ত ট্রেনে ছোড়া ঢিলে প্রকৌশলী প্রীতি দাশ নিহত হওয়ার পর রেলওয়ের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটির সদস্য রেলওয়ে কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, দুষ্কৃতকারীরা ইচ্ছা করে ট্রেনে ঢিল ছুড়ে ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। ওই ঘটনায় যে দুই কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। কর্মকর্তারা বলেছেন, এটা যে শুধুমাত্র অপরিণত শিশ���রাই করে তা নয়, বরং অনেকে ডাকাতি ও ট্রেনের ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে এই কাজ করে। রেলপথমন্ত্রী বলছেন, বর্তমানে রেলওয়েতে অনেক কাজ হচ্ছে, বিভিন্ন রুটে নতুন নতুন ট্রেন চালু করা হচ্ছে। কাজেই ঢিল ছোড়ার বিষয়টি স্বার্থান্বেষী মহলের কোন ষড়যন্ত্র কি-না, তা চিহ্নিত করার পাশাপাশি কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি তিনি আহবান জানিয়েছেন। রেলওয়ে কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ''এখানে একটি বড় সমস্যা যে, কারা এই ঢিল ছুড়ছে, তাদের সনাক্ত করা। কারণ বেশিরভাগ ঘটনা প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বা রাতের অন্ধকারে ঘটছে।" ফলে যেসব স্থান দিয়ে ট্রেন চলাচল করে, সেখানকার জনপ্রতিনিধি এবং বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে এর বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করছেন রেল কর্মকর্তারা। রেলওয়ে আইনে কী রয়েছে? রেলওয়ে আইনের ১২৭ ধারা অনুযায়ী, ট্রেনে পাথর ছোড়া হলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। তবে পাথর নিক্ষেপে কারো মৃত্যু হলে ৩০২ ধারা অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। যদিও এসব আইনে কারো শাস্তির কোন নজির নেই বলেই কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: একমাস রোজা রাখলে যা ঘটে আপনার শরীরে আইএস জঙ্গিরা কি বাংলাদেশে ফেরত আসছে? নজরকাড়া, নাটকীয় আর কিছুটা অদ্ভুত সব পোশাকে তারকারা ভিন্ন বর্ণে বিয়ে: মেয়েকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারলো বাবা সিলেট থেকে ট্রেনে করে ঢাকা ফিরছিলেন মুনমুন চৌধুরী। খাবারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, এমন সময় তার আসনের পাশের জানালা ভেঙ্গে কাচের টুকরো মুখে, শরীরে আঘাত করে। +text: সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ (ডানে) এবং পুলিশ প্রধান বেনজির আহমেদ। যেখানে সিনহা মোহাম্মদ রাশেদের মৃত্যু হয়েছে সেই কক্সবাজারে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজির আহমেদ এই বক্তব্য তুলে ধরেন। আজই তারা দুজনে ঢাকা থেকে কক্সবাজার সফরে যান যখন পুলিশের গুলিতে সাবেক সেনা কর্মকর্তার মৃত্যু নিয়ে দেশজুড়ে তীর্ব্র বিতর্ক হচ্ছে। মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান পুলিশের গুলিতে নিহত হাবার পর থেকে সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই এবং পুলিশের দিক থেকে পরস্পর বিরোধী ভাষ্য পাওয়া যাচ্ছিল। ঘটনার পর থেকে সেনাবাহিনীর অনেকের মধ্যে দৃশ্যত একটি ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে প্রতীয়মান হয়। বিভিন্ন মাধ্যমে ফাঁস হয়ে যাওয়া সেনাবাহিনীর গোপন দাপ্তরিক নথি থেকে সেটি বোঝা যায়। এমন প্রেক্ষাপটে সেনা ও পুলিশ প্রধান কক্সবাজার সফর করেছেন। সেখানে তারা দু'জন ঊর্ধ্বতন সেনা এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছেন। বৈঠক শেষেই দুই বাহিনীর দুই শীর্ষ কর্মকর্তা যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, "যে ঘটনাটা হয়েছে সেটা নিয়ে নিয়ে অবশ্যই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আমরা মর্মাহত এবং পুলিশ বাহিনীর সবাই মর্মাহত।" তিনি বলেন, সরকার যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সেটি উপর সেনা ও পুলিশ বাহিনীর আস্থা আছে। সেনাপ্রধান বলেন যে ঘটনা ঘটেছে সেটার সাথে যারা সম্পৃক্ত থাকবে সেটার দায়িত্ব তাদের নিতে হবে। এর দায়-দায়িত্ব কোন প্রতিষ্ঠানের হতে পারে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। সেনাপ্রধান বলেন, পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে যে আস্থা এবং বিশ্বাস প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেটি অটুট থাকবে। "এই ঘটনা নিয়ে সেনাবাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর মধ্যে যাতে কোন ধরণের সম্পর্কে চিড় ধরানো বা ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি করার কোন প্রয়াস যাতে কেউ না চালায় সেজন্য সবাইকে অনুরোধ করবো," বলেন সেনাপ্রধান। সংবাদ সম্মেলনে সেনাপ্রধানের পাশেই বসা ছিলেন পুলিশ প্রধান বেনজির আহমেদ। তিনি বলেন, পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস এবং আস্থার সম্পর্ক রয়েছে। সেনাপ্রধানের কথার প্রতিধ্বনি করে পুলিশ প্রধান বেনজির আহমেদও বলেছেন, মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান নিহত হবার ঘটনাটিকে তারা বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখছেন। এই ঘটনা পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে পারষ্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোন ব্যত্যয় সৃষ্টি করবে না বলে উল্লেখ করেন পুলিশ প্রধান বেনজির আহমেদ। মি. আহমেদ সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ঘটনাটিকে ব্যবহার করে একটি মহল পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে সম্পর্কের চিড় ধরানোর চেষ্টা করছে। "এটাকে অনেকে এই সুযোগে দুই বাহিনীর মধ্যে কোন বিষয় বলে উপস্থাপনের চেষ্টা করছেন।... এই সমস্ত উস্কানি দিয়ে তারা কখনোই সফল হতে পারবে না," বলেন পুলিশ প্রধান। দুটো বাহিনীর প্রধান বলেছেন, সরকার যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সেটির উপর তাদের সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। এই কমিটি যাতে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে সেজন্য পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে বলে তারা উল্লেখ করেন। আরো খবর: পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করলেন গুলিতে নিহত রাশেদের বোন হাওরে বেড়াতে গিয়ে ট্রলার ডুবে মারা গেলো ১৭ জন সিনহা রাশেদ নিহতের ঘটনায় পুলিশ ও ডিজিএফআই’র পরস্পরবিরোধী ভাষ্য লেবাননে দুইজন বাংলাদেশি নিহত, নৌ জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত, বহু আহত পুলিশের গুলিতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের মৃত্যুকে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে বর্ণনা করেছেন বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রধান এবং পুলিশ প্রধান দুজনেই। +text: বাজারে চালের দাম বাড়ছে, সরকার বলছে সংকট নেই চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিলগুলো দাম বাড়িয়ে দেয়ার প্রভাব পড়েছে বাজারে। আর মিল মালিকরা বলছেন, ধানের সরবরাহ কম। তবে এ সংকট সাময়িক কারণ কয়েকদিন পরেই নতুন চাল বাজারে আসবে । খাদ্য সচিব ডঃ মোছাম্মৎ নাজমানারা খাতুন বলছেন যে দাম বাড়ার মূল কারণ হলো কৃষকেরা ধান কম বিক্রি করছেন। "এ মুহূর্তে স্কুল কলেজ বন্ধ। নানা ধরনের সরকারি সাহায্য যাচ্ছে। করোনার জন্য খরচও কমে এসেছে। তাই হয়তো অনেকের ধান বিক্রির তাড়া নেই। সে কারণেই ধান মিলে কম যাচ্ছে। যারা বিক্রি করছেন তারাও একটু লাভবান হওয়ার চেষ্টা করছেন। কৃষক টাকাও পাচ্ছে। এখন যে দাম বাড়ছে চালের সেটি কোনোভাবে সংকট জনিত কারণে নয়," বিবিসি বাংলাকে তিনি জানান। তাহলে সরকারকে কেন চাল আমদানি করতে হচ্ছে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "নানা কারণে বা জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য অনেক সময় র‍্যাশনিং বা বিতরণ করতে হয় সরকারকে। সে জন্য মজুদ রাখার দরকার হয়। কৃষকের কাছ থেকে নিলে বাজারে সংকট হতো। তাই সরাসরি আমদানি করা হচ্ছে।" খাদ্য সচিব জানান, প্রথম চালানের ৫০ হাজার টন ইতোমধ্যেই চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছেছে। এছাড়া জানুয়ারির মধ্যে আরও অন্তত দেড় লাখ টন চাল বাংলাদেশে আসবে। "তবে এ আমদানির সাথে বাজারে চালের দামের কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ ধান বা চালের কোনা সংকট নেই। যদিও প্রত্যাশার চেয়ে উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে এ বছর। তারপরেও সেটি খুব একটা বেশি নয় বলেই কোনো সংকট তৈরি হয়নি"। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: শুরু হয়েছে চাল আমদানি তবে সরকার বলছে জরুরি প্রয়োজনে বিতরনের জন্য মজুদ বাড়ানো হচ্ছে কিন্তু বাজার পরিস্থিতি আসলে কেমন? ঢাকার একজন চাল ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন রাজা বলছেন, সব ধরণের চালের দামই বাড়িয়ে দিয়েছে মিলগুলো । তিনি জানান, মোটা চাল বস্তা প্রতি একশ টাকা, মিনিকেট বা চিকন চাল দুশো টাকা, নাজিরশাইল ৫/৬শ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। "মিলগুলো বলছে ধানের সরবরাহ কম। প্রতিদিনই কিছু কিছু করে বাড়ছে। এখন সরকারের আমদানি করা চাল আসলে হয়তো বাজার স্থিতিশীল হবে," বলছিলেন তিনি। যদিও খাদ্য সচিব জানিয়েছেন বাজারের পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক বলেই মনে করছেন তারা। "বাজারে কোনো সংকট নেই। ধানও আছে কৃষকের কাছে। মাঝে মধ্যে বাজারে সরবরাহ তারা কমালে একটু প্রভাব পড়ে।" রাইস মার্চেন্ট এসোসিয়েশনও জানিয়েছে, সামনে বাজারে নতুন চাল আসবে। আর এই নতুন চাল আসার আগে দাম কিছুটা বাড়ে যেটা স্বাভাবিক বলেই মনে করছেন তারা। ওদিকে সরকারি হিসেবে ৫ লাখ ৫১ হাজার ২৯০ টন চাল মজুদ আছে, যদিও গত বছর একই সময়ে মজুদ ছিলো প্রায় সাড়ে দশ লাখ টন চাল। ধান চাষের ওপর জরিপ করে ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট বলছে আগামী জুনে ৩০ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত থাকবে ৫৫ লাখ টন উদ্বৃত্তের আভাস ছিল গত অগাস্টে চালের মজুদ নিয়ে নিজেদের এক সেমিনারে ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট পূর্বাভাস দিয়েছিলো যে চাহিদা মেটানোর পরেও সাড়ে ৫৫ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত থাকবে। তখন বলা হয়েছিলো, নভেম্বরের মধ্যে আউশ ও আমনের উৎপাদন যুক্ত হলে খাদ্য ঘাটতির কোনো সম্ভাবনাই থাকবেনা। আর এখন আবার ইন্সটিউটি বলছে, আগামী জুন নাগাদ উদ্বৃত্ত থাকবে ৩০ লাখ টন। প্রতিষ্ঠান কৃষি অর্থনীতি বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো: সাইফুল ইসলাম বলেন, করোনা বা বন্যা পরিস্থিতির কারণে উৎপাদন কিছুটা কম হলেও সেটি সংকট তৈরি করার মতো নয়। "সংকট নেই, উদ্বৃত্তও আছে। কৃষকের হাতে ধান ও মিলারদের হাতে চাল আছে। এখন সেটি বাজারে কতটা আসছে সেটি আমরা বলতে পারবো না। নিশ্চয়ই সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলো এসব বিষয়ে কাজ করছে," বলছিলেন তিনি। মি. ইসলাম বলেন, এবারও সারা দেশ থেকে বিস্তারিত তথ্য নেয়া হয়েছে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে, নেয়া হয়েছে স্যাটেলাইট চিত্রও। "কোথায় কোন ধান কতটুকু হচ্ছে তার একটি সার্বিক হিসেব আমরা নিয়েছি, পাশাপাশি দেশের মানুষের জন্য কতটুকু ধান দরকার হয় সে হিসেবও আছে। এসব হিসেব নিকেশ করেই আমরা একটা ধারণা দিয়েছি যে কতটা চাল উদ্বৃত্ত থাকবে," বলছিলেন তিনি। তাহলে সরকারকে আমদানিই না করতে হচ্ছে কেন - এমন প্রশ্নের জবাবে সাইফুল ইসলাম বলেন তারা সবসময়ই সরকারকে দশ থেকে বার লাখ মেট্রিক টন মজুত রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। "মজুত যথাযথ থাকলে বাজার নিয়ে কোনো দুরভিসন্ধির কোনো সুযোগ থাকে না। পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজনে সরকার জনগণের মধ্যে চাল বিতরণ করতে পারে। আবার কৃত্রিম সংকট মোকাবেলাতেও এটি ভূমিকা রাখে। তাই সরকার আমদানি করছে মানে এই নয় যে আমরা যে আভাস দিয়েছিলাম সেটি সত্যি হয়নি বা হবে না।" বাংলাদেশের ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট পাঁচ মাসে আগে আভাস দিয়েছিলো যে এ বছরের শেষে প্রায় সাড়ে ৫৫ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত থাকবে, অথচ বাজারে সব ধরণের চালের দামই বেড়ে যাছে। +text: প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সামনে অভিযোগ তুলছেন প্রিয়া সাহা, যে ভিডিওটি বাংলাদেশে ভাইরাল হয়েছে । মার্কিন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী গত ১৭ই জুলাই হোয়াইট হাউসে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ২৭ জন ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হওয়া ব্যক্তির সাথে কথা বলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরা সবাই ওয়াশিংটন গত ১৬ থেকে ১৮ই জুলাই পর্যন্ত মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরে আয়োজনে অনুষ্ঠিত একটি ইভেন্টে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন - যার নাম ছিল 'সেকেন্ড মিনিস্টারিয়াল টু এ্যাডভান্স রিলিজিয়াস ফ্রিডম'। সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী ঢাকার মার্কিন দূতাবাস এতে পাঁচ জন বাংলাদেশী এবং দু'জন রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীর একটি প্রতিনিধিদল পাঠায় - যার একজন ছিলেন প্রিয়া সাহা। তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে থেকে তার ভাষায় '৩৭ মিলিয়ন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান নিখোঁজ হয়েছে', তার নিজের বাড়িঘরও আক্রান্ত হয়েছে কিন্তু এর কোন বিচার হয় নি। মি ট্রাম্পকে অনুরোধ করেন তিনি যেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সাহায্য করেন - যাতে তারা দেশে থাকতে পারে। প্রিয়া সাহা মিজ সাহার সাথে মি. ট্রাম্পের কথোপকথনের ভিডিওটি অনলাইনে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় এক দিনের মধ্যেই। পড়তে থাকে অসংখ্য মন্তব্য। ফেসবুকসহ নানা প্ল্যাটফর্মে শুরু হয় বিতর্ক। সরকারের মন্ত্রীরাও কথা বলতে শুরু করেন এ নিয়ে। প্রিয়া সাহার অভিযোগের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ সরকার শনিবার বলেছে, এসব অভিযোগ ভয়ংকর মিথ্যা। কী বলেছিলেন প্রিয়া সাহা? প্রিয়া সাহার আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে কথা বলেন ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে শ্বেতাঙ্গ বন্দুকধারীর সন্ত্রাসী হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া নিউজিল্যান্ডের মুসলিম ফরিদ উদ্দিন। এর পর পাকিস্তানের নিপীড়িত খ্রীস্টানদের বিষয়ে কথা বলেন আরেকজন। তার পর কথা বলেন প্রিয়া সাহা। তিনি ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে বলেন, "স্যার, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। এখানে ৩৭ মিলিয়ন (তিন কোটি ৭০ লাখ) হিন্দু বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টান নিখোঁজ হয়ে গেছে। দয়া করে আমাদের, বাংলাদেশী মানুষদের, সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই। সে দেশে এখনো ১৮ মিলিয়ন (১ কোটি ৮০ লাখ) সংখ্যালঘু আছেন। আমার অনুরোধ হচ্ছে, আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশ ছেড়ে যেতে চাই না। শুধু আমাদের দেশে থাকতে সাহায্য করুন।" তার কথার মাঝখানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মিজ সাহার সাথে হাত মেলান। প্রিয়া সাহা আরো বলেন, "আমি আমার বাড়ি হারিয়েছি। তারা আমাদের বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। তারা আমাদের জমি নিয়ে নিয়েছে। কিন্তু এর কোন জাজমেন্ট (বিচার) হয় নি।" বাংলাদেশে হিন্দু জনগোষ্ঠীর সংখ্যা এখন ৯ শতাংশের মতো বলে মনে করা হয়। এ সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাকে প্রশ্ন করেন "বাড়ি ও জমি কে নিয়েছে?" প্রিয়া সাহা একটু কথা গুলিয়ে ফেললেও পর মুহূর্তেই বলেন, "মুসলিম মৌলবাদী গোষ্ঠী। তারা সবসময়ই রাজনৈতিক আশ্রয় পাচ্ছে। সব সময়।" এর পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উপস্থিত অন্য প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলতে শুরু করেন। তীব্র প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশ সরকার শনিবার প্রিয়া সাহার অভিযোগের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, এসব অভিযোগ ভয়ংকর মিথ্যা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, এসব সাজানো গল্পের পেছনে অশুভ উদ্দেশ্য রয়েছে। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, এসব অভিযোগ কেন আনা হয়েছে, প্রিয়া সাহা দেশে ফিরলে তাকে এবিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পদক ওবায়দুল কাদের মিজ সাহার বিরুদ্ধে 'দেশদ্রোহী বক্তব্য দেবার' অভিযোগ করে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার কথা বলেন। বাংলাদেশে রাজধানী ঢাকায় একটি গীর্জা যুক্তরাষ্ট্র থেকে সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন, প্রিয়া সাহা এখন নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছেন। বিবিসি বাংলার পক্ষ থেকে তাকে ফোন করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয় নি। প্রিয়া সাহার সংগঠন কী বলছে? অন্যদিকে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, মিজ সাহা যা বলেছেন এগুলো তার ব্যক্তিগত মত, সংগঠনের নয়। তিনি বলেন,"���ে 'ডিজঅ্যাপিয়ার' কথাটির সাথে তিন কোটি ৭০ লক্ষ যে সংখ্যা বলেছেন প্রিয়া সাহা - সেটা সত্য নয়। তবে, দেশভাগের পর এখানে সাড়ে চার কোটি মানুষের মধ্যে সংখ্যালঘু মানুষের সংখ্যা ছিল ২৯.৭ শতাংশ। কিন্তু ২০১১ সালে সেটা এসে দাঁড়ায় ৯.৭ শতাংশে।" "এটাকে অর্থনীতিবিদেরা বলেন 'মিসিং পিপল' মানে হারিয়ে যাওয়া জনগোষ্ঠী। কিন্তু 'ডিজঅ্যাপিয়ার্ড' মানে নিখোঁজ বা গুম। এখন এই শব্দ দিয়ে প্রিয়া কী বলতে চেয়েছেন, সেটা তিনিই জানেন"- বলেন মি. দাশগুপ্ত। 'পরিসংখ্যানগত বাস্তবতা' অবশ্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের 'উধাও' হয়ে যাওয়া নিয়ে প্রিয়া সাহার বক্তব্যের সমালোচনা হলেও, বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিশেষ করে হিন্দুদের একটি বড় অংশ দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন, সেটি একটি বাস্তবতা। বাংলাদেশে রাজধানী ঢাকার একটি বৌদ্ধ মন্দির তারা বলছেন, ১৯৪৭ সালের পর ২০১১ সাল পর্যন্ত সংখ্যালঘু মানুষের সংখ্যা যে ১৮ শতাংশ কমে গেছে বাংলাদেশে সেটি পরিসংখ্যানগত বাস্তবতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ঈশানী চক্রবর্তী বলছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মানুষের দেশত্যাগ করা নিয়ে সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও দেশত্যাগ বিভিন্ন সময় ঘটেছে, এটা মিথ্যা নয়। "বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে সেরকম কোন গবেষণা নেই। কিন্তু সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী নানা সময়ে দেশত্যাগ করেছেন সেটা তো বাস্তবতা।" "মূলত দুটি কারণে এই দেশত্যাগের ঘটনা ঘটে। প্রথম কারণ অর্থনৈতিক, সেটা বুঝতে কোন পরিসংখ্যান লাগে না। আর দ্বিতীয় কারণ অনিশ্চয়তা, যেটা সংখ্যালঘু মানুষের মধ্যে সব সময়ই থাকে" - বলেন মিজ চক্রবর্তী। ঈশানী চক্রবর্তী বলেন, এই অনিশ্চয়তার পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে দেশের এ পর্যন্ত কোন সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার হয়নি। সেক্ষেত্রে এ অনিশ্চয়তা দূর করার জন্য সরকারের আরো মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। বিবিসি বাংলায় আরো দেখতে পারেন: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচার হয় না কেন? বাংলাদেশে হিন্দু জনসংখ্যা বেড়েছে: বিবিএস বাংলাদেশের হিন্দুরা কেন দেশ ছেড়ে যাচ্ছে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে অভিযোগ তুলছেন প্রিয়া সাহা নামে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সংগঠনের এক নেত্রী - এই ভিডিও প্রকাশের পর দেশটিতে ব্যাপক আলোড়ন ও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। +text: সুপারস্টোরে গেলে ক্যাশ কাউন্টারের লাইনে দাঁড়াতে হবেনা এমন ব্যবস্থা হচ্ছে যেখানে কেনাকাটা করতে গ্রাহকদের আর ক্যাশ কাউন্টারে যেতে হয় না। এজন্য যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় এই খুচরা বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানটি তাদের কয়েকজন কর্মচারীদের স্মার্টফোনে একটি বিশেষ ধরণের অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল করে দেয়। নির্দেশনা ছিল তারা যেন টেসকোর সদর দফতরের একটি স্টোরে এই অ্যাপটি ব্যবহার করে। মূলত এই অ্যাপের সাহায্যে তারা ক্রেতাদের প্রয়োজনীয় পণ্যের বারকোড স্ক্যান করে পেমেন্ট নেয়। এতে ক্যাশ রেজিস্ট্রার যন্ত্রের কোন প্রয়োজন হয়না। আর এই অ্যাপটি তৈরি করেছে কো-অপ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। তবে অ্যামাজান এরইমধ্যে এই প্রযুক্তির সাহায্যে সিয়েটলে একটি চেক আউট ফ্রি গ্রোসারি স্টোর চালু করেছে। তবে টেসকো জানায়, তাদের এই পরীক্ষা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। চেক আউট ফ্রি স্টোরগুলোয় ক্রেতাদের লাইনে দাঁড়ানোর ঝামেলা নেই। তবে এই প্রযুক্তির আশঙ্কার দিকটি হল, এসব চেক আউট ফ্রি স্টোরগুলোয় ক্রেতাদের আলাদা করে মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় অনেক ছিচকে চোর এর সুযোগ নিয়ে লুটপাট করতে পারে। এছাড়া এই পদ্ধতিতে মুনাফা খুব সীমিত হওয়ায় প্রযুক্তিটি আদৌ কতোটুকু গ্রহণযোগ্য হবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। টেসকোর প্রধান নির্বাহী ডেভ লুইস জানান, "যদি ব্যবসা থেকে মুনাফার পরিমাণ দুই থেকে তিন শতাংশ হয়। তাহলে সেই ব্যবসা করা না করা একই কথা। তবে টেসকোর আকারের স্টোরগুলোয় এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হলে সেটা চেক আউট মুক্ত কেনাকাটার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হবে।" বর্তমানে ব্রিটেনের ম্যানচেস্টার শহরের একটি স্টোরে প্রযুক্তিটির পরীক্ষামূলক ব্যবহার হচ্ছে। কিছুদিন পরেই অন্যান্য স্টোরগুলোতে এর পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরুর কথা রয়েছে। এ ব্যাপারে খুচরা বাজার ব্যবস্থা পর্যবেক্ষক স্টিভ ড্রেসার বলেন, "এই চেক আউটমুক্ত স্টোরগুলোয় সম্প্রতি যে হারে চুরির ঘটনা ঘটছে খুচরা ব্যবসায় এমনটা গত ১০ বছর ধরে চলে আসছে। তবে চেক আউট মুক্ত স্টোরগুলো থেকে যে আয় হয় সেটায় যদি এই চুরির লুক্কায়িত ব্যয় যুক্ত হয়। তাহলে ব্যবসা কেমন চলবে সেটা নিয়ে আমার সংশয় রয়েছে। তবে ক্রেতারা সবসময়ই বাড়তি ঝামেলা এড়িয়ে যেতে চান। সেক্ষেত্রে তারা হয়তো এই প্রযুক্তিকে সাদরেই গ্রহণ করবে।" তবে সিয়াটলের আমাজন স্টোরটি পেমেন্টের ক্ষেত্রে আরও উন্নত পদ্ধতি ব্যবহার করেছে। আরো পড়ুন: ভারত কি পারবে নগদ টাকা মুক্ত দেশে রূপান্তরিত হতে? ভুয়া পাঁচ-তারকা রিভিউ কেনা-বেচা চলছে অনলাইনে শপিংয়ে ছেলেদের চাইতে মেয়েরা বেশী আগ্রহী? এজন্য তারা তৈরি করেছে অ্যামাজন গো নামের একটি বিশেষায়িত অ্যাপ। আমাজন স্টোরে প্রবেশ থেকে শুরু করে কেনাকাটা এমনকি বেরিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় এই অ্যাপের। ক্রেতারা শুধু তাদের অ্যাপযুক্ত স্মার্টফোনটি সোয়াইপ করার মাধ্যমে স্টোরে প্রবেশ করে। স্টোরটিতে রয়েছে শত শত মাউন্ট করা ক্যামেরা এবং ইলেকট্রনিক সেন্সর। যার সাহায্যে প্রতিটি গ্রাহককে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা যায়। তেমনি তারা স্টোর থেকে কোন পণ্যগুলো নির্বাচন করছে সেটাও তারা মনিটর করতে পারে। গ্রাহকরা শুধু পছন্দের পণ্যটি তাদের শপিং ব্যাগের মধ্যে ভরে নেন। কেনাকাটা শেষ হলে আগের মতোই স্মার্টফোন সোয়াইপ করে বেরিয়ে যান। অ্যামাজন স্টোরে স্মার্টফোন সোয়াইপ করার মাধ্যমে প্রবেশ করতে হয়। বেরিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ক্রেতারা যতো পণ্য ব্যাগে রেখেছেন সেটা ক্যামেরা ও সেন্সরের মাধ্যমে তালিকা করা হয়। বেরিয়ে যাওয়ার পর ক্রেতার ক্রেডিট কার্ড থেকে পণ্যের বিল কেটে রাখা হয়। এছাড়া ওয়েলউইন গার্ডেনসিটিতে টেসকোর সদর দফতরের স্টোরটিও চলে নগদ লেনদেন ছাড়া। এতে চেক আউটের সময় প্রতি ক্রেতা বাবদ গড়ে ৪৫ সেকেন্ড কমে গেছে বলে দাবি টেসকোর। দেখা গেছে, টেসকোর আকারের স্টোরগুলোতে ক্রেতাদের চেক আউটের সময় অর্থ লেনদেন বাবদ জনপ্রতি ৯০ সেকেন্ডের প্রয়োজন হয়। ব্রিটেনসহ বিভিন্ন দেশে গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের পছন্দের সুপারস্টোরগুলোর মধ্যে একটি টেসকো। সম্প্রতি তারা কেনাকাটাকে আরো সহজ করে তুলতে একটি অভিনব পদ্ধতির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করেছে। +text: উজ্জল লাল রঙয়ের এই আপেলটি রংয়ের কারণে ইনস্টাগ্রামেও জনপ্রিয় হবে বলে মনে করা হচ্ছে দুই দশক যাবত এই আপেলের জাতটি নিয়ে গবেষণা করার পর আপেলটি ব্যবসায়িকভাবে ওয়াশিংটন রাজ্যের কৃষকদের চাষ করার জন্য অনুমতি দেয়া হচ্ছে। শুধু ওয়াশিংটনের কৃষকরা আগামী দশ বছর এই জাতের আপেল চাষ করতে পারবে। ১৯৯৭ সালে ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটি গবেষণামূলকভাবে এই আপেলটি প্রথমবার চাষ করে। নতুন ধরণের এই আপেলের চাষ ব্যবসায়িকভাবে শুরু করতে ১ কোটি ডলার খরচ হয়েছে। আরো পড়ুন: বাঙালিদের কেন আপেল-স্ট্রবেরি না খেলেও চলবে? ৭০ দিন পর কাশ্মীরে ফের চালু হচ্ছে মোবাইল ফোন ধর্ষণকারী কোন ধর্মের, ভারতে বিতর্ক যখন তা নিয়ে কসমিক ক্রিস্প নামের এই আপেলের জাতটি হানি ক্রিস্প ও এন্টারপ্রাইজ, এই দুই ধরণের আপেলের সংমিশ্রণ। ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটিতে এই আপেলটির চাষ ও বংশবৃদ্ধি বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনা করা একজন গবেষক কেট ইভান্স জানান এই আপেল ফ্রিজে থাকলে ১০ থেকে ১২ মাস পর্যন্ত খাওয়ার যোগ্য থাকে এবং আপেলের স্বাদ ও অন্যান্য গুণাগুণও অক্ষুন্ন থাকে। এখন পর্যন্ত ১ কোটি ২০ লাখের বেশি কসমিক ক্রিস্প আপেলের গাছ লাগানো হয়েছে এবং কঠোর লাইসেন্সিং পদ্ধতি দিয়ে নিশ্চিত করা হয়েছে যে ওয়াশিংটন বাদে দেশের অন্যান্য এলাকার কৃষকরা যেন এই জাতের আপেল চাষ করতে না পারে। যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি আপেল হয় ওয়াশিংটনে। ঐ এলাকার অন্যতম জনপ্রিয় আপেলের জাত গোল্ডেন ডেলিশাস এবং রেড ডেলিশাস। তবে সম্প্রতি পিঙ্ক লেডি ও রয়্যাল গালা জাতের আপেলও বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। কলার পর যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া ফল আপেল। বিবিসি বাংলার আরো খবর: আপেল থেকে তৈরি কৃত্রিম কান যুক্তরাষ্ট্রে রবিবার থেকে নতুন এক ধরণের আপেল বিক্রি শুরু হয়েছে যেটি এক বছর পর্যন্ত সতেজ থাকবে বলে বলা হচ্ছে। +text: পদ্মা সেতুর কাজ ২০২১ সালের মধ্যে শেষ করতে চায় সরকার এরপরে সড়ক ও রেলের স্ল্যাব বসানোর কাজ শুরু হবে। কবে নাগাদ পদ্মা সেতুর সব কাজ শেষ হয়ে যান চলাচল শুরু হতে পারে? সেতুর টোল কতো হতে পারে? ফেরিও কি তখন চালু থাকবে? সেইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে বিবিসি বাংলা। সর্বশেষ স্প্যান পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক মোঃ. শফিকুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, আমাদের সর্বশেষ স্প্যানটি ১০ই ডিসেম্বর স্থাপন করার মধ্য দিয়ে সেতুর মূল কাজটি শেষ হয়ে গেল, অর্থাৎ কাঠামো তৈরি হয়ে গেল। এই স্প্যানটি স্থাপন করার মাধ্যমে পদ্মা সেতুর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার মূল অবকাঠামো দৃশ্যমান হবে। আরও পড়তে পারেন: পদ্মা সেতুর ছবি সামাজিক মাধ্যমে দিতে মানা কেন পদ্মা সেতু তৈরিতে মানুষের মাথা লাগার গুজব কেন? ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে যেভাবে ব্যবহার করা যাবে যমুনার উপর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রেল সেতু যেমন হবে পদ্মা সেতু বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প স্প্যান হচ্ছে ইস্পাতের মূল কাঠামো, যেগুলো এক পিলারের সঙ্গে আরেক পিলারের সংযোগ তৈরি করে। এরপর এসব স্প্যানের উপর গাড়ি ও রেল চলাচলের জন্য স্ল্যাব বসিয়ে উপযোগী করা হয়। এটি হচ্ছে পদ্মা সেতুর ৪১তম স্প্যান। অর্থাৎ এর আগে এরকম আরও ৪০টি স্প্যান বসানো হয়েছে। এখন স্প্যানগুলোর ওপর সড়ক ও রেল লাইনের স্ল্যাব বসানোর কাজও চলছে। প্রথম স্প্যানটি বসানো হয়েছিল ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। এসব স্প্যান চীনে তৈরি করে জাহাজে করে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। পদ্মা সেতুর কাজ কবে শেষ হচ্ছে পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি জানিয়েছে, পদ্মা সেতু যান চলাচলের উপযোগী হতে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত লেগে যাবে। তবে বাংলাদেশের সরকার চেষ্টা করছে, স্বাধীনতার ৫০ তম বছরের মধ্যেই পদ্মা সেতু উদ্বোধন করার। অর্থাৎ সরকার ২০২১ সালের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ সম্পন্ন করে যান চলাচল শুরু করতে চায়। বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছেন, আগামী এক বছরের মধ্যেই সেতুটি চালু হবে। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হতে ১০ মাস থেকে এক বছর লাগবে। পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক মোঃ. শফিকুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ''সেতুর কাজ শেষ হতে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সময় লেগে যাবে বলে জানিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে আমরা তাদের সাথে আলোচনা করছি যাতে এই সময় এগিয়ে নিয়ে আসা যায়। আমরা স্বাধীনতার ৫০তম বছর, ২০২১ সালের মধ্যেই সেতুটি চালু করতে চাই।'' তবে কর্মকর্তারা বলছেন, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সরকার অনুরোধ করতে পারে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ওপর জোর করার সুযোগ নেই। তবে প্রতিষ্ঠানটি কাজ এগিয়ে নিতে সক্ষম হলে সেটা ২০২১ সালে চালু হতে পারে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি সেটা না পারলে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। সেতু চালু করার জন্য এর আগে সর্বশেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০২১ সালের জুন মাস। কিন্তু করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে সেই সময় ১০ মাস বেড়েছে। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ��ির্মাণাধীন অবকাঠামো সেতু পারাপারের টোল কতো হবে পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক মোঃ. শফিকুল ইসলাম জানাচ্ছেন, সাধারণত যেসব নদীতে ফেরি চলাচল করে, সেখানে একটি স্ট্যান্ডার্ড প্রাকটিস রয়েছে যে, ফেরি পারাপারের সময় যানবাহনগুলোকে যে পরিমাণ টোল দিতে হয়, সেতু পারাপারের ক্ষেত্রেও সেটাই টোল নির্ধারণ করা হয়। সাধারণত বিদেশি অর্থায়নে কোন সেতু নির্মিত হলে কত টাকা টোল হবে, সেটা নির্ধারণে দাতাদের পরামর্শ বা শর্ত থাকে। কিন্তু দেশীয় অর্থায়নে নির্মিত সেতুর টোল কত হবে, সেরকম কোন নিয়মনীতি নেই। আপাতত সরকারের সেতু বিভাগ পদ্মা সেতুর জন্য যে টোল হারের প্রস্তাব করেছে, সেটি ফেরি টোলের চেয়ে দেড়গুণ বেশি। সেতু চালু হওয়ার পর পরবর্তী ১৫ বছরের জন্য মোটরসাইকেলের জন্য ১০৫ টাকা, কার জিপের জন্য ৭৫০ টাকা, ছোট বাসের জন্য ২০২৫ টাকা, বড় বাসের জন্য ২৩৭০ টাকা, পাঁচ টনের ট্রাকের জন্য ১৬২০ টাকা, আট টনের বড় ট্রাকের জন্য ২৭৭৫ টাকা, মাইক্রোবাসের জন্য ১২৯০ টাকা টোল প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতি ১৫ বছর টোলের হার ১০ শতাংশ বাড়ানো হবে। তবে এখনো এই প্রস্তাবের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার। তবে শেষ পর্যন্ত টোল কতো হবে, সেটা নির্ভর করে সরকারি সিদ্ধান্তের ওপর। বাংলাদেশের অর্থ বিভাগের সঙ্গে সেতু বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী, সেতু নির্মাণে ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে সরকার। ১ শতাংশ সুদ হারে ৩৫ বছরের মধ্যে সেটি পরিশোধ করবে সেতু কর্তৃপক্ষ। সেই পরিশোধ বিবেচনায় নিয়েই টোলের এই হার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফেরি কি চালু থাকবে? এই বিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বঙ্গবন্ধু সেতুর ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সেতু চালু হওয়ার পরেও আরিচা-নগরবাড়ী রুটে ফেরি পারাপার চালু ছিল। সুতরাং সেতু চালু হওয়ার পরেও ফেরি চলবে কিনা, সেটি নির্ভর করবে চাহিদার ওপর। তবে কর্মকর্তারা বলছেন, যেহেতু পদ্মা সেতু পার হয়ে একদিকে ভাঙ্গা, অন্যদিকে শরীয়তপুর-মাদারীপুর যাওয়া সহজ, ফলে এখানে আলাদাভাবে ফেরির প্রয়োজন হবে না। সুতরাং এই রুটে ফেরি চালু থাকার সম্ভাবনা অনেক কম। পদ্মা সেতু বাংলাদেশ সরকারের রাজনৈতিক অগ্রাধিকার পাওয়া প্রকল্পগুলোর একটি সেতুর এখন কী কাজ বাকি রয়েছে? পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক মোঃ. শফিকুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ''এখন আমাদের অনেকগুলো কাজ বাকি থাকছে। যেমন রোডওয়ে স্ল্যাব, (এটা ৪০ শতাংশের বেশি হয়ে গেছে), রেলওয়ে স্ল্যাব (এটা ৬০ শতাংশের বেশি হয়ে গেছে), ব্রিজের রেলিং, স্ট্রিট ও আর্কিটেকচারাল লাইটিং, গ্যাস ও বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন করতে হবে।'' রোডওয়ে স্ল্যাবের ২৯১৭টির মধ্যে ১২৮৫টি স্থাপন করা হয়েছে। ''ঠিকাদারের সঙ্গে আমাদের আলাপ-আলোচনা চলছে। আমরা চেষ্টা করছি, যত তাড়াতাড়ি পারা যায় এসব কাজ শেষ করার জন্য। কারণ সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য আমাদের ওপর প্রত্যাশা-চাহিদা অনেক বেশি রয়েছে। '' তিনি বলছেন। আগামী একমাসের মধ্যেই সেতুর কাজ সম্পন্ন করার একটি সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করা হতে পারে বলে তিনি জানান। রেল যোগাযোগ কবে চালু হবে সেতুর নিচ দিয়ে রেল চলাচল করবে। তবে সেতুর ওপর রেল লাইন স্থাপনের কাজ অর্ধেকের বেশি সম্পন্ন হয়ে গেলেও ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু পর্যন্ত এবং পদ্মা সেতুর পর থেকে রেলের লাইনের কাজের এখনো অনেক বাকি রয়েছে। ফলে সেতু উদ্বোধন হলেও রেল কবে থেকে চলাচল করতে শুরু করবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে সেতুর ওপরের রেললাইনের ২ হাজার ৯৫৯টি স্ল্যাবের মধ্যে ১৯৩০টি এর মধ্যেই স্থাপন করা হয়েছে। পদ্মা সেতু কী পরিবর্তন আনবে বাংলাদেশে এর আগে আর কোন সরকারি অবকাঠামো এতো বেশি অর্থ খরচ করে তৈরি করা হয়নি। বলা হচ্ছে, দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে এই সেতুটি। অর্থনীতিবিদ নাজনীন আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ''পদ্মা সেতু বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে বিশাল ভূমিকা রাখতে যাচ্ছে। প্রথমত, সেটি মানুষের ও পণ্যের যাতায়াতের সময় বাঁচিয়ে দেবে। ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, ব্যবসাবাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে, কর্মসংস্থান বাড়বে।'' ''আর দ্বিতীয় যেটা হবে, এই সেতুকে ঘিরে অনেক অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে। পণ্য পরিবহন সহজ হওয়ায় অনেকে ওই এলাকায় গিয়ে বিনিয়োগ করবেন। দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে এটা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। সেসব এলাকায় অনেকে নতুন নতুন কারখানা খুলবেন, ব্যবসা-বাণিজ্য করবেন।'' তিনি বলছেন, হয়তো সেতু হওয়ায় সেখানকার কিছু মানুষ পেশা হারাবে, কিন্তু স্বল্পমেয়াদ এবং দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক সুফলই বেশি। পদ্মা সেতু নিয়ে আরও কিছু তথ্য বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নির্মাণাধীন অবকাঠামো পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যানটি বসানো হয়েছে। এর মাধ্যমে সেতুটির মূল কাঠামো পুরোপুরি দৃশ্যমান হলো। +text: নর্থ সাউথ ব���শ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সহকারী অধ্যাপক মোবাশ্বার হাসান নিখোঁজ হওয়ার দেড় মাস পর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে ঢাকার বনশ্রী এলাকায় তাদের বাসায় ফেরেন বলে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। মি. হাসানের বোন তামান্না তাসমিন বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, তাঁর ভাই বিশ্রামে আছেন। তিনি ক্লান্ত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তিনি আরো বলেন, ভাইয়ের সাথে কথা বলে তিনি এমন ধারণা পেয়েছেন যে তাকে টাকার জন্য অপহরণ করা হয়ে থাকতে পারে। মি. হাসান তাঁর পরিচিতজনদের কাছে সিজার নামে পরিচিত। গত এক বছর যাবত বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে 'পলিটিকাল সায়েন্স এন্ড সোশিওলজি' বিভাগে শিক্ষকতা করছিলেন মি. হাসান। তিনি পিএইচডি গবেষণার বিষয় ছিল বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইসলামের প্রভাব। তাঁর ফেরার ঠিক দুদিন আগে আরেক নিখোঁজ সাংবাদিক উৎপল দাস বাড়িতে ফেরেন। তিনিও দুমাস ধরে নিখোঁজ ছিলেন। এই দুটি নিখোঁজের ঘটনাই বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে আলোচিত ছিল। দুজনের ফেরার দাবিতেই বিভিন্ন তরফ থেকে বিক্ষোভ প্রতিবাদ হয়েছে। আরো পড়ুন: কে এই নিখোঁজ মোবাশ্বার হাসান? সন্ধান মিলেছে নিখোঁজ সাংবাদিক উৎপল দাসের 'কোন শব্দই এই কষ্টকে ব্যাখ্যা করতে পারবে না' মোবাশ্বার হাসান কিভাবে বাসায় ফিরেছেন তার একটা বর্ণনা এসেছে তাঁর বোন তামান্না তাসমিনের কাছ থেকে। তিনি বলেন, তাঁর ভাইকে একটি মাইক্রোবাসে করে বিমানবন্দর সড়কে এনে ছেড়ে দেয়া হয়। সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় রাত ১টার দিকে বনশ্রীর বাসার নিচে এসে পৌঁছান তার ভাই। বাসার সামনে এসে সিএনজি চালকের মোবাইল ব্যাবহার করে পরিবারের সদস্যদের ফোন করেন মি. হাসান এবং বলেন সিএনজি ভাড়া বাবদ ৫শ টাকা নিয়ে আসতে। খিলগাঁও থানা পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গির কবির খান জানিয়েছেন, রাত একটার দিকে মি. হাসানের বাবা থানায় ফোন করে তাঁর ফেরার কথা জানিয়েছেন। তবে অসুস্থ থাকার কারণে পুলিশ মি. হাসানের সাথে এখনই কোন কথা বলছে না। প্রয়োজন হলে তার সাথে কথা বলা হবে। মিজ তাসমিন তার ফেসবুক একাউন্ট থেকে আজই (শুক্রবার) সকালে বাংলা ও ইংরেজিতে একটি স্ট্যাটাসেও মি. হাসানের ফিরে আসার খবরটি দেন। তিনি লেখেন, "আল্লাহতালার অশেষ রহমতে গতকাল দিবাগত রাত ১টায় আমার ভাইয়া সুস্থ অবস্থায় বাসায় ফিরেছে!" গত ৭ই ন���েম্বর থেকে মি. হাসানকে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ বিষয়ে খিলগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি)করা হয়। বাংলাদেশে নিখোঁজ ব্যক্তিরা ফেরার পর চুপ থাকেন কেন - এ বিষয়ে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে দেখতে পারেন প্রতিবেদনটি: এবার ঘরে ফিরেছেন ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোবাশ্বার হাসান । +text: মুনতাদের আল-জায়েদি মুনতাদের আল-জায়েদি আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে শিয়া নেতা মোক্তাদা আল-সদরের জোটের সমর্থক একজন প্রার্থী হিসেবে অংশ নিচ্ছেন। দু হাজার আট সালে - মার্কিন সেনা অভিযানের সাদ্দাম হোসেনের পতনের পাঁচ বছর পর - বাগদাদ সফরে এসে তৎকালীন ইরাকি প্রধানমন্ত্রী নূরী আল-মালিকিকে সাথে নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ। আর তাতে আল-বাগদাদিয়া টিভির সাংবাদিক হিসেবে তাতে উপস্থিত ছিলেন মি. জায়দী তিনি হঠাৎ উঠে দাঁড়িয়ে জর্জ বুশকে 'কুকুর' বলে সম্বোধন করে তাকে লক্ষ্য করে তার দু'পাটি জুতো ছুঁড়ে মারেন। তিনি বলছিলেন, দুটি জুতোর একটি হচ্ছে ইরাকি জনগণের বিদায়ী চুম্বন, আর অপরটি মার্কিন অভিযানে নিহতদের স্ত্রী-সন্তানদের পক্ষ থেকে। দুটোর কোনটাই মার্কিন প্রেসিডেন্টের গায়ে লাগে নি, তবে জুতো ছুঁড়ে মারাটা আরবের সংস্কৃতিতে গুরুতর অপমানসূচক বলে মানা হয়। এ ঘটনা মুনতাদের আল-জায়েদিকে রাতারাতি আরব বিশ্বে একজন 'হিরো' বা নায়কোচিত ব্যক্তিতে পরিণত করে। প্রেসিডেন্ট বুশ বলেছিলেন, তিনি এতে রাগ করেননি বরং আমোদ পেয়েছেন। "আমি প্রেসিডেন্ট হিসেবে বহু বিচিত্র ঘটনা দেখেছি, তবে সবচেয়ে আজব ঘটনা ছিল এটাই।" বিবিসি বাংলায় আরো খবর: দুবাই রাজকন্যার পলায়ন নাটক, বিতর্কে নরেন্দ্র মোদী কেন সুচির সুর নরম, নিরাপত্তা পরিষদ কি বলেছে তাকে 'দিনে পাঁচবার যৌনমিলনও যথেষ্ট ছিল না' 'ইসলাম বিদ্বেষ কমছে, তবে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক' জায়েদির সমর্থনে তুরস্কের আংকারায় মার্কিন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ দেহরক্ষীরা সাথে সাথেই আল-জায়েদিকে আটক করে এবং পরে একজন বিদেশী নেতাকে আক্রমণ করার অভিযোগে আকে ১২ মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়। তিনি ৯ মাস জেল খাটার পর বেরিয়ে আসেন, এবং অভিযোগ করেন যে বন্দী অবস্থায় তার ওপর কারারক্ষী ও কর্মকর্তারা অত্যাচার করেছে। তিনি বলেন - তার ভাঙা দাঁত, হাড় এবং অন্যান্য আঘাতের জন্য চিকিৎসা দরকার। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে মি আল-জায়���দি সাংবাদিকতা ছেড়ে দেন, এবং ইউরোপে চলে যান। সেখানে তিনি ইরাকি যুদ্ধের শিকারদের জন্য একটি মানবিক প্রতিষ্ঠান খোলেন। দশ বছর আগে বাগদাদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের দিকে জুতো ছুঁড়ে মেরেছিলেন যে সাংবাদিক - তিনি এখন পার্লামেন্টের সদস্য হবার জন্য ভোটে দাঁড়াচ্ছেন। +text: জনবল এবং অস্ত্রবল নির্ধারণ করেছে দলের কাঠামো এবং প্রভাব। পাশাপশি সুন্দরবনসহ দেশের পুরো দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে নিজেদের মধ্যে সীমানা ভাগাভাগি করে এই জলদস্যুরা দাপটের সাথে তৎপরতা চালিয়েছে। আসুন জেনে নেয়া যাক সুন্দরবনের জলদস্যুদের প্রধান দলগুলো সম্পর্কে: ১. মাস্টার বাহিনী: মাস্টার বাহিনীর দলনেতা কাদের মাস্টার। আত্মসমর্পনের আগে। সদস্য সংখ্যা, অস্ত্রশক্তি আর ভাবমূর্তির দিক থেকে শক্তিশালী দলগুলোর অন্যতম মাস্টার বাহিনী। দলনেতার ছদ্মনাম কাদের মাস্টার। আসল নাম মোস্তফা শেখ। বয়স ৪৮ বছর। দলে সদস্য সংখ্যা ৪৮। খুলনার মধ্যাঞ্চল অর্থাৎ পশুর ও শিবসা নদীর মাঝের এলাকায় ছিল মাস্টার বাহিনীর তৎপরতা। পাশপাশি সাগরের জেলেদের ওপর জলদস্যুতা চালায় এই দল। কাদের মাটার নয় জন সহযোগীকে সাথে নিয়ে ৩১শে মে, ২০১৬ সালে র‍্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। চাঁদাবাজি, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায় থেকে দলের বার্ষিক আয় ছিল আনুমানিক ছয় কোটি টাকা। কাদের মাস্টার জলদস্যু দলে যোগদান করে দলের প্রধান নোয়া মিয়ার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেন এবং দলের নেতৃত্ব দখল করেন। ডাবল ও সিঙ্গেল ব্যারেল শটগান, ১২ গেজ পাম্প-অ্যকশন শটগান, নাইন মি.মি. পিস্তল ছিল দলের মূল অস্ত্রশক্তি। ২. জাহাঙ্গীর বাহিনী: জাহাঙ্গীর বাহিনীর নেতা জাহাঙ্গীর শিকারি। সুন্দরবনের পুর্বাঞ্চল, অর্থাৎ চাঁদপাই রেঞ্জের পশুর নদীর দুই পারের এলাকা ছিল জাহাঙ্গীর বাহিনীর সীমানা। এই বাহিনীর বিশেষত্ব হলো এরা সাগরে জলদস্যুতা চালাতো না। এই দলের সদস্য সংখ্যা ২০ জন। ৩১টি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দলটি গত ২৯শে জানুয়ারি আত্মসমর্পণ করে। ঐ অঞ্চলে তৎপর সবগুলো জলদস্যু দলের মধ্যে এই দলের নেতা জাহাঙ্গীর শিকারিকে সবচেয়ে অত্যাচারী বলে বর্ণনা করা হয়। তার জলদস্যু জীবনের শুরু মোতালেব বাহিনীর বাবুর্চি হিসেবে। এর পর ১১ বছরে ধরে জলদস্যুতা চালানোর পর তিনি এক সময় দলের হাল ধরেন। আরো দেখুন: জঙ্গল থেকে জীবনে: পর্ব-১ বেঁচে থাকার তাগিদে সুন্দরবন ছাড়ছে জলদস্যুরা জঙ্গল থেকে জীবনে: পর্ব-২ শুধু প্রতিশ্রুতির ওপর দাঁড়িয়ে আছে জলদস্যু দমন জঙ্গল থেকে জীবনে পর্ব-৪ সুন্দরবনে শান্তি ফেরালেন যে সাংবাদিক ৩. নোয়া বাহিনী: নোয়া মিয়া, বিবিসির মুখোমুখি দলনেতা নোয়া মিয়ার নামে এই বাহিনী। সদস্য সংখ্যা ১২ জন। পশ্চিম সুন্দরবনের ভারত সীমান্ত থেকে শিবসা নদী পর্যন্ত এই দলের তৎপরতার সীমানা। দলনেতা নোয়া মিয়া ছিলেন মাস্টিার বাহিনীর সাবেক প্রধান। নেতৃত্ব নিয়ে সমস্যা শুরু হলে তিনি দলের ভেতরে অভ্যুত্থানের শিকার হন এবং দল থেকে বহিস্কৃত হন। পরে তিনি নিজের দল গড়ে তোলেন। ৪. মজনু বাহিনী: মজনু বাহিনীর প্রধান মজনু গাজী। উঁহু, বামের জন না। মাঝের জনও না। ডানের জন। সুন্দরবনের পশ্চিমাঞ্চলে সাতক্ষীরা জেলায় ছিল এই বাহিনীর বিচরণ ক্ষেত্র। দলের সদস্য সংখ্যা ২০ জন। দলনেতার নাম মজনু গাজী। তিনি ছিলেন খুলনার একজন ব্যবসায়ী। কিন্তু তার আসল ব্যবসা ছিল জলদস্যুদের অস্ত্র এবং গুলি সরবরাহ করা। পরে তিনি মোতালেব বাহিনীর একজন অংশীদার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। মোতালেব বাহিনীর প্রধান মোতালেব ২০১১ সালে র‍্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর মজনু গাজী দলনেতা হন। তিনি সুন্দরবনের অস্ত্র ও গোলাবরুদ সরবরাহ নেটওয়ার্কের একজন হোতা। নয় জন সঙ্গী নিয়ে ১৪ই জুলাই, ২০১৬ তিনি আত্মসমর্পণ করেন। তার জমা দেয়া অস্ত্রের মোট সংখ্যা ১৮টি। ৫.আলিফ বাহিনী: আলিফ মোল্লা, আলিফ বাহিনীর প্রধান। দলনেতা আলিফ মোল্লা ১৯ জন সঙ্গী নিয়ে চলতি বছরের ২৯শে এপ্রিল আত্মসমর্পণ করেন। সংগঠনের ভেতরে তিনি দয়াল নামে পরিচিত। সাতক্ষীরা জেলায় সুন্দরবনের একাংশ ছিল এই দলের কবলে। আলিফ মোল্লা ছেলেবেলা থেকে জলদস্যুতায় জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তিনি মোতালেব বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। পরে নিজের দল গড়ে তোলেন। র‍্যাব জলদস্যু দমনে অভিযান শুরু করার পর তিনি ভারতে পালিয়ে যান। আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর তিনি দেশে ফিরে আসেন। ৬. ইলিয়াস বাহিনী: ইলিয়াস, রাজু বাহিনীর হাল ধরেন। এই বাহিনীর সদস্য সংখ্যা প্রায় ৬০ জন। সুন্দরবনের বাগেরহাট এবং খুলনা জেলার বড় অংশে এরা দস্যুতা করতো। রাজু বাহিনীর প্রধান রাজু দস্যুবৃত্তি ত্যাগ করে ভারতে চলে যান। এর পর ইলিয়াস দলের হাল ধরেন। দুই জন সাথী নিয়ে তিনি আত্মসমর্পণ করেন ২৪শে জুলাই,২০১৬ সালে। রাজু বাহিনীতে অস্ত্র সংখ���যা প্রায় ২০০ হলেও আত্মসমর্পণের সময় অস্ত্র জমা পড়ে সাতটা। সুন্দরবনের ঝুঁকিপূর্ণ জীবন ছোট ছোট দস্যু দল: বড় দলগুলোর বাইরে সুন্দরবন এবং উপকূলীয় এলাকায় এক সময় বেশ কতগুলো উপদল তৎপর ছিল। এদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হলো: আলম বাহিনী, শান্তু বাহিনী, সাগর বাহিনী, খোকা বাবু বাহিনী, ছোট রাজু বাহিনী এবং কবিরাজ বাহিনী। সুন্দরবনের নারী ডাকাত রহিমা খাতুন (প্রাইভেসির স্বার্থে ভিন্ন নাম ব্যবহৃত হয়েছে।)-এর সাথে আমার দেখা হয় মংলার চিলা বাজারে। অতি সাধারণ এক গ্রামীণ নারী। আটপৌরে শাড়ি পড়া। মিষ্টি স্বভাবের। কিন্তু তার চোখের দৃষ্টি প্রয়োজনে ভয়ানক প্রখর হতে দেখেছি। সামনাসামনি দেখলে কেউ বুঝতেই পারবে না যে তিনি এক সময় সুন্দরবনের এক ভয়ঙ্কর জলদস্যু দলের নেতা ছিলেন। উনিশশো আশির দশকে নন্দবালা, চরপুটিয়া, শ্যালা নদীর আশেপাশের এলাকায় জলদস্যুতা করতো রহিমা খাতুনের দল। এক সময় এই দলের নেতা ছিলেন তার বাবা। এরপর ৯০-এ দশকের মাঝামাঝি পুলিশ তাকে অস্ত্রসহ আটক করে। বিচারে তার জেল হয়। কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তিনি আর জলদস্যুতায় ফিরে যাননি। দলটিও ভেঙে যায়। এখন ছোট্ট একটি চায়ের দোকান দিয়ে তার সংসার চলে। জঙ্গল থেকে জীব নে: পর্ব-৩ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় সুন্দরবন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ অরণ্য। ১০,০০০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই বনে এক সময় রাজত্ব করেছে দুটি শক্তি - রয়েল বেঙ্গল টাইগার আর প্রায় এক ডজন জলদস্যু দল। +text: এই উৎসবে ঘন ঘন আওয়াজ ওঠে: 'বুড়া না মানো, হোলি হ্যায়'। গত ক'দিনের ভেতর দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত দুজন ছাত্রী আলাদাভাবে জানিয়েছেন, রাস্তায় চলার সময় তাদের গায়ে পুরুষের বীর্য-ভর্তি বেলুন ছুঁড়ে মারা হয়েছে। আর এই কদর্য ঘটনা সামনে আসার পরই হোলির সময়ে গুণ্ডামির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তুঙ্গে উঠেছে। দিল্লি পুলিশ যদিও বলছে, তারা এই সব অভিযোগের তদন্ত করছে। কিন্তু নির্যাতিতাদের বক্তব্য হল, 'হোলির সময় ওরকম একটু-আধটু হয়' বলে স্থানীয় জনতাই অভিযুক্তদের আড়াল করে থাকেন। বৃহস্পতিবার সকালেও দিল্লি পুলিশের সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন কয়েকশো ছাত্রী। তাদের দাবি একটাই, আসন্ন হোলিতে উৎসব পালনের নামে তাদের ওপর জোরজবরদস্তি বন্ধ করতে হবে। বুধবার একই দাবিতে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মিছি�� করেছিল 'পিঁজড়া তোড়' নামে মেয়েদের বন্ধনমুক্তির এক সংগঠন। হোলি উৎসবে রঙের খেলা; কিন্তু প্রায়শই নারীরা নিগৃহীত হন। ছাত্রীদের এভাবে পথে নামার একটা বড় কারণ সম্প্রতি দক্ষিণ দিল্লিতে লেডি শ্রীরাম কলেজের এক ছাত্রীর গায়ে ছুঁড়ে মারা হয়েছে বীর্য-ভরা বেলুন, আর তিনি নিজেই তার বিবরণ দিয়েছেন ইনস্টাগ্রামে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই ছাত্রী জানান, "মহল্লার গলির ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের দিকে তাক করে বেলুন ছোঁড়া হয়েছিল, যেটা ফাটার পর দেখা যায় ভেতরে চটচটে আঠার মতো একটা পদার্থ। পরে আমরা বুঝতে পারি, ওটা পুরুষের সিমেন বা বীর্য।" "আমরা যখন রুখে দাঁড়াই, তখন কিন্তু পাড়ার মহিলারাই এগিয়ে এসে নিরস্ত করার চেষ্টা করেন - বলেন, ছেলেপিলে তো স্রেফ হোলি খেলছে।" ছাত্রীদের মিছিল থেকেও কিন্তু দাবি উঠছে, হোলির নামে মেয়েদের ওপর হিংসা বন্ধ করতে হবে, কারণ মেয়েরা তাদের হোলি খেলার 'হোলিকা' হতে রাজি নয়। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতা ও পিঁজড়া তোড়ের নাজমা রেহমানি বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "হোলির মতো রঙিন ও বর্ণময় উৎসবের আড়ালে আসলে একটা চরম অন্যায় করা হচ্ছে।" "এটা নতুন জিনিস নয় ... আমাদের কলেজ জীবনেও ক্যাম্পাসে বেলুন ছোঁড়া হত - তবে তাতে থাকত জল বা রং, কিন্তু এখন থাকছে সিমেন। যারা মেয়েদের গায়ে এই ধরনের বেলুন ছুঁড়ছে তাদের উদ্দেশ্যটা একবার ভাবুন! এটা তো কিছুতেই হোলি হতে পারে না", বলছিলেন তিনি। আরও দেখুন: মো সালাহ্‌ কি মুসলিমদের ফুটবলে উদ্বুদ্ধ করছেন? শ্রীদেবীর শব গ্রহণকারী কে এই আশরাফ থামারাসারি? 'টেলিফোন করলেই পৌঁছে যায় ইয়াবা' দিল্লি পুলিশ এই ঘটনাগুলোর ওপর তদন্ত শুরু করেছে। জিসাস অ্যান্ড মেরি কলেজের যে ছাত্রীকে গত রোববার বীর্যভর্তি বেলুন ছোঁড়া হয়েছিল, তিনিও এর মধ্যে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন। ওই ছাত্রীটি বলছিলেন, "ওই ঘটনায় আমি লজ্জিত হইনি। কিন্তু আমার প্রচণ্ড বিরক্ত লেগেছে, ঘেন্নায় বমি পেয়েছে। সিমেন-ভরা বেলুন ছুঁড়ে আসলে আঘাত করা হয়েছে আমার আত্মমর্যাদাকেই।" আর এক ছাত্রী রাভি জোতওয়ানি বলছিলেন, "উৎসব পালনের নামে বিষয়টাকে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা কিছুতেই মানা যায় না। কারণ এখানে মেয়েদের হেনস্থা করা হচ্ছে, শ্লীলতাহানি করা হচ্ছে, এমন কী তাদের গোপণাঙ্গ পর্যন্ত স্পর্শ করা হচ্ছে, আমি নিজেই যার ভুক্তভোগী।" বীর্য-ভরা বেলুন ছোঁ���়ার ঘটনায় দিল্লি পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে না পারলেও তারা তদন্ত শুরু করেছে। বাহিনীর একজন মুখপাত্র আরও জানিয়েছেন, এবারের হোলিতে তারা সব থানায় এই নির্দেশও পাঠিয়েছেন। অনিচ্ছুক কারও সঙ্গে হোলি খেলা, কিংবা তাকে রং মাখানো বা বেলুন ছোঁড়া হলে সেটা অপরাধ হিসেবেই দেখা হবে। রঙের এই উৎসব পালনে ঘন ঘনই আওয়াজ ওঠে - 'বুড়া না মানো, হোলি হ্যায়'। যার অর্থ হল: অন্যভাবে নিয়ো না, এটা তো হোলি। কিন্তু দিল্লির অনেক মেয়েই এখন বলছেন, যথেষ্ট হয়েছে, হোলির নামে এই বদমায়েশি এবার বন্ধ করার সময় হয়েছে। আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব নিয়ে রঙ খেলা। উত্তর ভারতের অন্যতম প্রধান উৎসব হোলির সময় রঙ মাখানোর নামে গুণ্ডামি বা মেয়েদের শ্লীলতাহানির প্রতিবাদে বহু ছাত্রী বৃহস্পতিবার পর পর দু'দিন দিল্লিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। +text: ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের টহল ভারতের গুয়াহাটিতে দুই বাহিনীর মহাপরিচালকরা মঙ্গলবার থেকে পাঁচদিনের যে বৈঠক শুরু করছেন, তার আগে বিএসএফের জারি করা এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে এই সম্মেলনের 'ফোকাস' হবে যৌথ পদক্ষেপ নিয়ে আন্ত:সীমান্ত অপরাধ বন্ধ করা। চলতি বছরে বিএসএফের হাতে সীমান্তে প্রাণহানির ঘটনা অনেক বেড়ে গেছে বলে বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ - কিন্তু বিএসএফ কীভাবে এই অভিযোগের প্রতিকারের কথা ভাবছে? দিনচারেক আগে ভারত ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে ভার্চুয়াল সামিটের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছিলেন, সীমান্তে প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র ব্যবহার করার নির্দেশনা তিনি নিজে দেবেন বলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশকে কথা দিয়েছেন। সেপ্টেম্বরেও ঢাকায় বৈঠকে বসেছিলেন দুদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর প্রধানরা সীমান্তে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা যে তাদের চরম লজ্জিত করছে, মি মোমেনের কথায় সেই ইঙ্গিতও ছিল। সেই সামিটের ঠিক পর পরই গুয়াহাটির সম্মেলনে মিলিত হচ্ছেন দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রধান - আর তার আগে ভারতীয় পক্ষের বিবৃতি থেকে স্পষ্ট, তাদের স্ট্র্যাটেজি হল সীমান্তে অপরাধ ঠেকানোর মাধ্যমে প্রাণহানি বন্ধ করার চেষ্টা। বিএসএফের সাবেক মহাপরিচালক প্রকাশ সিং বিবিসিকে বলছিলেন, "দেখুন ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে গরু ও মাদক পাচার-সহ নানা ধরনের সমস্যা ���ছে। ভারতীয়রা গরু পাচার করতে চায়, বাংলাদেশিরা নিতেও চায়।" "কখনও কখনও এই সশস্ত্র পাচারকারীরা বিশ-তিরিশ জনের দল বেঁধে এলে বিএসএফের গুলি চালানো ছাড়া রাস্তা থাকে না।" আরও পড়তে পারেন: সীমান্ত হত্যা নিয়ে বিএসএফের যুক্তি মানছে না বিজিবি বিজিবি বলছে অনুপ্রবেশকারী, পুলিশ বলছে বাংলাদেশি ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরার ঢল, জানাচ্ছে বিএসএফের তথ্য বিএসএফের বিবৃতির অংশবিশেষ "এখানে বন্ধুপ্রতিম বাংলাদেশের সংবেদনশীলতা নিয়ে ভারত সরকার পুরোমাত্রায় সচেতন, কিন্তু কোনও কোনও পরিস্থিতিতে বলপ্রয়োগ করা ছাড়া বিএসএফের সত্যিই উপায় থাকে না!" তবে বিএসএফ বলছে, দুই বাহিনীর মধ্যে যদি রিয়েল-টাইম 'তথ্য বিনিময়ের ব্যবস্থা' থাকে এবং 'সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা' ঠিকমতো বাস্তবায়ন করা যায় - তাহলে আন্ত:সীমান্ত অপরাধে রাশ টানা সম্ভব। পি কে সিং কিন্তু মনে করিয়ে দিচ্ছেন, "দুদেশের লোকরাই এই সব অপরাধে জড়িত এবং স্মাগলিং বা চোরাকারবারের অর্থনীতিতে মুনাফাও প্রচুর।" "বাংলাদেশে ভারতীয় গরুর চাহিদাও কম নয়, ফলে এগুলো চট করে বন্ধ করা খুবই মুশকিল।" সীমান্তে গবাদি পশুর পাচার খুবই লাভজনক একটি কারবার নানা সীমান্ত ইস্যু নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করছেন পশ্চিমবঙ্গে ডায়মন্ড হারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অনিন্দিতা ঘোষাল। তিনি বিবিসিকে বলছিলেন, তথাকথিত এই সব সীমান্ত অপরাধ বা 'ট্রান্সবর্ডার ক্রাইমে'র সঙ্গে রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের যোগসাজশও কিন্তু সুবিদিত। অধ্যাপক ঘোষালের কথায়, "আসলে আমরা দেশের মূল ভূখন্ডের লোকজন বর্ডার এলাকাটা বুঝিই না। যখন আমরা ফিল্ডওয়ার্কে সীমান্ত এলাকায় যাই ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলি - তখন বুঝি, সীমান্তের ছবিটা আসলে একেবারেই অন্য রকম।" "আমরা এখানে যেটাকে 'ক্রাইম' বলি কিংবা যাদেরকে অপরাধী বা ক্রিমিনাল বলে চিহ্নিত করি, বর্ডার এলাকায় গিয়ে কিন্তু দেখতে পাই 'নেশন স্টেট' বা রাষ্ট্রই সেই ক্রিমিনালদের তৈরি করেছে।" বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁওয়ে বিএসএফের হাতে নিহত এক ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের বিলাপ "সীমান্ত পেরিয়ে যে লোকগুলো আসার চেষ্টা করছে তাদের কিন্তু দেখা যাবে সাহায্য করছে এই নেশন স্টেটের বৈধ নাগরিকরাই। টাকাপয়সার হাতবদল হচ্ছে, আধাসামরিক বাহিনীকে অর্থ দিয়ে পারাপার চলছে - গ্রাউন্ড লেভেলে বিষয়টা ওভাবেই চলে।" "ফলে নেশন স্টেটও স��মান্তটা ওভাবেই 'পোরাস' করে রাখে, ফুটোফাটা সারায় না - কারণ তাতে তাদেরই সুবিধে", বলছিলেন অনিন্দিতা ঘোষাল। সম্প্রতি ভারতেও বিএসএফের পদস্থ কর্তাদের নাম জড়িয়েছে মুর্শিদাবাদ সীমান্তে গরু পাচারের ঘটনায় - তাদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও হতে হয়েছে। পর্যবেক্ষকরাও ফলে একমত, বিএসএফে যদি সর্ষের মধ্যেই ভূত থাকে তাহলে সীমান্ত অপরাধ কমানোয় বা প্রাণহানি ঠেকানোয় তাদের সদিচ্ছা কতটা সে প্রশ্ন উঠবেই। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অপরাধ বন্ধ করা গেলে অনাকাঙ্ক্ষিত প্রাণহানিও আপনা থেকেই বন্ধ হয়ে যাবে, এই কৌশলগত অবস্থান নিয়েই ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফের শীর্ষ নেতৃত্ব বাংলাদেশের বিজিবি-র সঙ্গে আলোচনায় বসছে। +text: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া পড়ালেখার পাশাপাশি 'দ্য ডেইলি সান' নামে একটি জাতীয় দৈনিকের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক হিসেবেও কাজ করেন। তিনি অভিযোগ করছেন, তাকে সম্প্রতি তার সাংবাদিকতা ও ফেসবুক স্ট্যাটাসের জের ধরে সাময়িক বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তার সঙ্গে অশালীন শব্দ ব্যবহার করে খারাপ আচরণ করেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এদিকে উপাচার্য অধ্যাপক খন্দকার মোঃ নাসিরউদ্দীন অভিযোগ করছেন, ছাত্রীটি অন্তত দুবার তার ফেসবুক আইডি হ্যাক করেন। এছাড়া উপাচার্যের ভাষায়, ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া আরেক ছাত্রের যোগসাজশে 'ভিসি, প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংসের মহাপরিকল্পনা' করছিল এই প্রমাণ তারা পেয়েছেন। একারণেই তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এই ঘটনাটি বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে। উপাচার্যের বক্তব্য, ওই শিক্ষার্থী যদি তার দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করে তবে তার বহিষ্কারাদেশ তুলে নেয়া হবে। কিন্তু জিনিয়া বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন,"আমি যেখানে অপরাধই করিনি, সেখানে কেন ক্ষমা চাইবো"। উপাচার্য অধ্যাপক খন্দকার মোঃ নাসিরউদ্দীন শিক্ষার্থীর অভিযোগ: বিবিসিকে ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া বলেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক হিসেবে নানা সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনিয়ম, দুর্নীতি ও যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে প্রতিবেদন করেন। এসব সংবাদের জন্য বিভিন্ন সময়ে তাকে হুমকি দেয়া হয়েছে। এসবের ধারাবাহিকতায় গত ২৪শে অগাস্ট একটি সংবাদের জন্য উপাচার্যের বক্তব্য নিতে গেলে, উপাচার্য একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসের জের ধরে তাকে গালিগালাজ করেন বলে জিনিয়া অভিযোগ করেন। যে ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে এই ইস্যু সেটিতে তিনি লিখেছিলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ কী হওয়া উচিত?' তার অভিযোগ, এক পর্যায়ে তার সংবাদের একজন সূত্র বা সোর্স, যিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই একজন ছাত্র, তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যেদিন ছাত্রটিকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, ওইদিন রাতে তার মেসেও হামলা চালানো হয় বলে জিনিয়া অভিযোগ করেন। সর্বশেষ গত ১২ই সেপ্টেম্বর তিনি সাময়িক বহিষ্কারের নোটিশ পান, যেখানে কারণ হিসেবে দেখানো হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিয়ে একজন ছাত্রের সঙ্গে আপত্তিকর আলোচনা করা, বিশ্ববিদ্যালয়কে হেয় করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়া এবং উপাচার্যের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা। নোটিশে উল্লেখিত সবগুলো অভিযোগই অবশ্য অস্বীকার করেছেন ওই জিনিয়া। উপাচার্যের বক্তব্য: ওদিকে উপাচার্য হুমকি দেয়া বা অশালীন আচরণ করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি পাল্টা অভিযোগ করেছেন যে ছাত্রীটি আরেকজন ছাত্রের সঙ্গে মিলে বিশ্ববিদ্যালয় ও এর প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিল। সেই সাথে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা নিয়েওই একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছিল। আরো খবর: দায় কি শুধু ছাত্রলীগ যুবলীগের নেতাদের? যেভাবে গড়ে ওঠে দুর্ধর্ষ কিশোর অপরাধীদের দল মানিব্যাগ ফিরিয়ে দিয়ে আলোচিত রোমের বাংলাদেশি আত্মহত্যা ঠেকাতে কীটনাশক নিষিদ্ধ করেছে যেসব দেশ অস্থির মধ্যপ্রাচ্যে কি আরেকটি সর্বাত্মক যুদ্ধ আসন্ন? গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাময়িক বহিষ্কৃত ছাত্রী তার নিজের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি করেছেন। +text: মুখে মাস্ক আছে, কিন্তু সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না বেশিরভাগ জায়গায় অফিস, দোকান, বাজার কিংবা গণ-পরিবহন সব খানেই একই পরিস্থিতি। তবে করোনাভাইরাস নিয়ে শঙ্কা আর দ্বিধার কারণে নেহায়েত জরুরি প্রয়োজন না হলে মানুষ বাইরে বের হচ্ছেন না। এদিকে, আন্তঃজেলা পরিবহন ও বিমান চলাচলে অনেক ক্ষেত্রেই প্রত্যাশামত যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না বলে বলছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সরকারি-বেসরকারি অফিসে ও রাস্তায় ঢিলেঢালা 'স্বাস্থ্যবিধি' অনুসরণ ঢাকার মতিঝিল, তেজগাঁও, মহাখালী এবং গুলশানের বেশিরভাগ অফিসের বাইরে থেকে দেখা যায়, ঢোকার মুখেই ব্লিচিং পাউডারে ভেজানো পাপোষ, শরীরের তাপমাত্রা মেপে ভেতরে ঢোকানো, এবং হাতে স্যানিটাইজার মেখে কর্মীদের ভেতরে প্রবেশ করানো হচ্ছে। কোন কোন প্রতিষ্ঠানে জীবাণুনাশক টানেলের ব্যবস্থাও রয়েছে, তবে সেগুলো মূলত বহুজাতিক বা আন্তর্জাতিক সংস্থার অফিস। তবে, সরকারি অফিস ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর প্রবেশমুখে সুরক্ষায় অতটা কড়াকড়ি দেখা যায়নি, সেই সঙ্গে ব্যাংকে ঢোকার জন্য গ্রাহকদের সারিতেও সামাজিক দূরত্ব মানার ব্যাপারেও যেন গরজ ছিল কম। রাস্তায় নামা লোকের ভিড় মূলত অফিস কেন্দ্রিক,ফলে শহরের শপিং মলগুলো খুললেও সেখানে একেবারেই ভিড় নেই। ঢাকার একটি প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিষ্ঠানের কর্মী মোহসিনা সুরভী, সাধারণ ছুটির এক সপ্তাহ পরেও নিজের অফিসের সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট নন। "আমাদের অফিসটা কর্মীর তুলনায় একটু 'কনজেস্টেড', যে কারণে রোস্টার করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরেও অফিসের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা সব সময় সম্ভব হয় না। নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন বিশ্ব মহামারি শেষ হতে কতদিন লাগবে? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় করোনাভাইরাস নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন ''আবার অফিসের যে লিফট, সেখানেও অনেক মানুষই আসা-যাওয়া করে, প্লাস যে গার্ড লিফট অপারেটর করে তার নিরাপত্তারও কোন বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, কিন্তু তার সংস্পর্শে তো অনেক মানুষ আসে রোজ। ফলে মনের মধ্যে সব সময়ই ভয় থেকে যাচ্ছে।" পরিবহন খাতে কী অবস্থা ঢাকার মধ্যে চলাচল করা গণপরিবহনের মালিক ও শ্রমিকেরা বলছেন, বাস চালু হলেও যাত্রী সংখ্যা খুবই কম। সেই সঙ্গে চালক সংকটের কারণে বাসও নামানো হয়েছে কম। মিরপুর ১২ নম্বর থেকে সদরঘাট পর্যন্ত যায় বিহঙ্গ পরিবহন, এর একজন সুপারভাইজার মোঃ বশিরউদ্দিন বলছিলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবার পরেও যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। "আমাদের ৪৫ আসনের বাসে আমরা সর্বোচ্চ ২২জন যাত্রী নেব, এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু আমরা যাত্রী পা��� ৮জন, ১০জন বা পিকের টাইমে সর্বোচ্চ ১৫ জন।" "আরেক সমস্যা হলো, লক-ডাউনের টাইমে অনেক ড্রাইভার ও হেল্পার ফল বিক্রি, ডিম বিক্রি এমন অন্য পেশায় চলে গেছে, অনেকে গ্রামে চলে গেছে। যে কারণে এখন ড্রাইভারেরও সংকট আছে, সব গাড়ি (বাস) নামানো যায় নাই রাস্তায়।" এদিকে ঢাকা থেকে দূরপাল্লার বাসেও যাত্রী সংখ্যা অনেক কমে গেছে বলে জানিয়েছেন পরিবহন সংস্থার মালিক-শ্রমিকেরা। গাবতলি ও মহাখালী বাস টার্মিনালের কয়েকটি পরিবহন সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, যাত্রী কমে যাওয়ার কারণে বাসের ট্রিপ সংখ্যা কমিয়ে দেয়া হয়েছে। বিমানেও যাত্রী কম যাত্রী কমেছে বিমান সংস্থাগুলোতেও। যাত্রী স্বল্পতার কারণে অভ্যন্তরীণ রুটে গত সাত দিনের মধ্যে পাঁচদিনই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়। বিমানের উপ-মহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকার বলেন, যাত্রী স্বল্পতার কারণে সোমবার পর্যন্ত বিমানে সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। "আমরা প্রথম দিন সাতটি ফ্লাইট অপারেটর করেছি---সৈয়দপুর, সিলেট ও চট্টগ্রামে। এর পরদিন ছয়টা এবং পরেরদিন চারটা করে ফ্লাইট শিডিউল করা হয়, কিন্তু আমরা টিকেট বুকিং এর হার পর্যালোচনা করে দেখেছি, সেটা খুব একটা সন্তোষজনক নয়, ফলে ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।" তবে বাংলাদেশ বিমানের মত যাত্রী স্বল্পতায় ফ্লাইট বাতিল করতে হয়নি অন্য বেসরকারি সংস্থাকে। এখনো নিতান্ত প্রয়োজন না হলে কেউ ভ্রমণ করছেন না। তবে স্বাভাবিক সময়ের মত যাত্রী সংখ্যা হতে এখনো বেশ কিছুদিন সময় বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। বাংলাদেশে গত রোববার থেকে গণ-পরিবহনসহ সব ধরণের সরকারি-বেসরকারি অফিস চালু হয়েছিল। কিন্তু সরকার ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি, বিশেষ করে সামাজিক দূরত্ব রেখে কাজ করার নিয়ম অনেক জায়গাতেই মেনে চলা হচ্ছে না। +text: চান্ডিকা হাথুরুসিংহা যদি হাথুরুসিংহে শ্রীলঙ্কার কোচ হিসেবে যোগ দেন তবে তার প্রথম সিরিজ থাকবে বাংলাদেশের বিপক্ষে। শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড বা এসএলসির ক্রিকেট কমিটির পরামর্শে হাথুরুসিংহের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এসএলসির প্রেসিডেন্ট থিলাঙ্গা সুমাথিপালা। এবিষয়ে বিসিবির প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসানের কাছে একটি চিঠি দিয়েছেন তিনি। এই বিষয়ে বিবিসি বাংলার পক্ষ থেকে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট থিলাঙ্গা সুমাথিপালার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, "যেহেতু হাথুরুসিংহের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক আক্ষরিক অর্থে শেষ হয়ে যায়নি তাই আমরা অপেক্ষা করছি।" "হাথুরসিংহে নিজেও আমাদের কাছে আগ্রহের কথা জানাননি, আমরা আশা করছি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড হাথুরুসিংহের পদত্যাগপত্র গ্রহন করলে আমরা তাকে নিয়োগ দিতে পারবো।" বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজামুদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, এবিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি বিসিবি। চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সাথে বিসিবির চুক্তি ছিলো ২০১৯ সাল পর্যন্ত। আরো দেখুন: রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সমঝোতা জীবন বাঁচিয়ে আজীবন ফাউ মাছের মাথা কিন্ত অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের সফরের পর তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কোছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। চলতি বছরের জুন মাস থেকেই শ্রীলঙ্কার জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচের পদ খালি। গ্রাহাম ফোর্ড তার দ্বিতীয় মেয়াদে ১৫ মাস শ্রীলঙ্কার কোচের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর নিক পোথাস অন্তবর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব নেন। তবে এখন শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট কমিটি হাথুরুসিংহেকেই এই পদের জন্য যোগ্য হিসেবে মনে করছেন। তবে তারা জানিয়েছেন স্বচ্ছ ও পেশাদার উপায়েই তারা এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন। যেহেতু হাথুরুসিংহের সাথে এখনো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের চুক্তির মেয়াদ রয়েছে তাই বিসিবির সাথে আলোচনা করেই হাথুরুসিংহেকে নিয়োগ দেবে এসএলসি বা শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট। চান্ডিকা হাথুরুসিংহেকে চেয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কাছে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট। +text: ধর্ম নিয়ে সহিংসতা উস্কে দেয়া এতো সহজ কেন? এদেরই একজন শাহাবুদ্দিন আহমেদ। পেশায় শ্রমিক, পড়ালেখা তেমন নেই। ভোলায় ইসলামের নবীকে কটূক্তির কথিত ঘটনা তিনি ফেসবুকের মাধ্যমেই জেনেছেন। বিষয়টি নিয়ে তার মধ্যে একটু ক্ষোভও আছে বোঝা গেলো। তিনি বলছিলেন, 'নবী সাল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লামকে কটুক্তি করছে। এইটা নিয়া প্রতিবাদ তো হবেই। মানুষ ফেসবুকে ভিডিও দিচ্ছে। বলতেছে যে এইটা ভালো না।' আপনি কি এরকম ভিডিও লাইক বা শেয়ার করেন? এমন প্রশ্নে হ্যাঁ সূচক উত্তর দিলেন শাহাবুদ্দিন আহমেদ। এবার তাকে জিজ্ঞেস করি, ফেসবুকে যে সত্যি সত্যিই একজন হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউ ইসলামের অবমাননা করেছে, সেটা তিনি কিভাবে নিশ্চিত হচ্ছেন? তার উত্তর 'হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ মানুষ এটা নিয়া কথা বলতেছে, আন্দোলন করতেছে। সত্য না হইলে কি এতো লোক নামতো?' বাংলাদেশে শাহাবুদ্দিনের মতো আরো অনেকেই আছেন, যাদের কাছে ধর্ম সবসময়ই অনেক স্পর্শকাতর বিষয়। ধর্ম অবমাননার যে কোন অভিযোগ, সেটা সত্য হোক কিংবা মিথ্যা, এসব লোককে খুব সহজেই বিক্ষুব্ধ করে তোলে। 'কক্সবাজারের রামু কিংবা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরেও একই প্রবণতা দেখা যায়। প্রথমে ফেসবুকে এরপরে মুখে মুখে ঘটনা ছড়িয়ে পড়ে। যার পরিণতি হয়, সংখ্যালঘুদের উপর ব্যাপক বিদ্বেষ এবং এর পথ ধরে হামলা ও লুটপাট। রামু, নাসিরনগর, ভোলা সবক্ষেত্রে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হয় ধর্ম অবমাননার কথিত ফেসবুক পোস্ট থেকে। ব্যাপক বিক্ষোভ এবং হামলার নেপথ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্ম অবমাননার কথিত পোস্ট নিয়ে যে ব্যাপক প্রচারণা হয়, পরে বিক্ষোভের আয়োজন হয় এবং শেষে হামলার ঘটনা ঘটে এর পেছনে কোন একটা গোষ্ঠীর ভূমিকা আছে বলেই মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক কাবেরী গায়েন। তিনি বলছিলেন, 'কোন কথায় আমরা কতটা উত্তেজিত হবো তার কিন্তু একটা পলিটিক্স আছে। দেখেন আমাদের মেয়েদের পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, ধর্ষণ হচ্ছে, নানারকম অনিয়ম হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে কিন্তু মানুষ এতো হাজারে হাজারে লাখে লাখে জড়ো হচ্ছে না।' 'আজকে আমাদের দেশে এই বাস্তবতা তৈরি হয়েছে যে, ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলেছে এ কথাটি যদি প্রচার করা যায়, তাহলে কিন্তু যে কোন বিপর্যয় করা সম্ভব।' ২০১২ সালে রামু'র ঘটনায় ফেসবুকে ইসলাম অবমাননার কথিত অভিযোগ আনা হয়েছিলো উত্তম বড়ুয়া নামে একজনের বিরুদ্ধে। একইভাবে ২০১৬ সালে নাসিরনগরে রসরাজ এবং এবারে ভোলার ঘটনায় অভিযোগ আনা হয়েছে বিপ্লব নামে আরেকজনের বিরুদ্ধে। যদিও প্রতিটি ঘটনাতেই পুলিশ বলছে, ঐসব ব্যক্তিদের একাউন্ট হ্যাক করে কিংবা কাউকে ট্যাগ করে এসব কথিত অবমাননার বিষয়গুলো সামনে আনা হয়েছিলো। কিন্তু ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে অন্যের নামে এসব পোস্ট কারা করছে সে বিষয়ে পরে আর কোন তথ্য দিতে পারেনি পুলিশ। এমনকি প্রতিটি ঘটনাতেই ফেসবুকে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে সংঘাতের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা হলেও পুলিশ ফেসবুকে দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে পারেনি বলেও সমালোচনা আছে। কাবেরী গায়েন বলছেন, ফেসবুকে কারা অন্যের একাউন্ট হ্যাক করে সংঘাত তৈরি করছে, পুলিশ সেটা চিহ্নিত করতে পারছে না। এবং এগুলো যে কারো কারসাজি সেই তথ্যটাও দ্রুততার সঙ্গে প্রচার করতে পারছে না। এমনকি কারা ফেসবুক আইডি হ্যাক করে পোস্ট দিচ্ছে তাদেরও চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। এছাড়া বিক্ষোভ থেকে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা হওয়াও ঠেকাতে পারেনি আইন-শৃংখলা বাহিনী। ভোলা, নাসিরনগর, রামু সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিটি ঘটনাতেই ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট করা হয়। পুলিশ কী বলছে? পুলিশ অবশ্য বলছে, ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয় হওয়ায় কথিত এসব পোস্ট খুব দ্রুতই ভাইরাল হয়ে যায়। কিন্তু নজরে আসা মাত্রই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বলছিলেন, 'কোন একটি তথ্যের সত্যতা যাচাই করে সে বিষয়ে জনগনের জন্য একটি বিবৃতি দিতেও কিন্তু একটু সময় লাগে। আমরা চেষ্টা করছি রেসপন্স টাইমটি আরো কমিয়ে এনে কতো দ্রুততার সাথে মানুষের কাছে সঠিক তথ্যটি তুলে ধরা যায়।' 'তবে এ ক্ষেত্রে একটি বাধা হচ্ছে, ফেসবুকের সহযোগিতা নিতেও একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই আমাদের যেতে হয়। এতে সামান্য কিছু দীর্ঘসূত্রতা থাকে। কিন্তু এ ধরণের অপকর্মের সঙ্গে যারা জড়িত অবশ্যই তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়।' নেপথ্যে রাজনীতি? ভোলার সর্বশেষ ঘটনায় নবী অবমাননার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ডেকে হাজার হাজার লোকের জমায়েত করেছিলো তৌহিদি জনতা নামে একটি সংগঠন। অন্যদিকে একই বিষয়ে ঢাকায় সমাবেশ করে হেফাজতে ইসলাম। সমাবেশ হয় আরো কয়েকটি স্থানে। বারবার একইভাবে ধর্ম অবমাননার কথিত অভিযোগ এবং পরে ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনা এসবের পেছনে একধরণের রাজনীতি আছে বলেই মনে করেন কাবেরী গায়েন। তার মতে, এই রাজনীতি হচ্ছে সরকার এবং ধর্মীয় গোষ্ঠী উভয় পক্ষ থেকেই। তিনি বলছেন, 'ধর্মকে রাষ্ট্র কিভাবে ডিল করে সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। আপনি দেখেন, এখানে হেফাজতের উত্থান হয়েছে, ধর্মভিত্তিক গোষ্ঠীগুলোকে অনেক বেশি প্রশ্রয় দিচ্ছে সরকার। এখানে একটা ভোটের রাজনীতিও আছে।' 'সরকারও আসলে একটু নড়বড়ে এখানে। সেও মনে করে যে ধর্মকে নিয়ে যারা রাজনীতিটা করছেন তাদের বিরুদ্ধে গেলে তার ভোটের হিসাব-নিকাষ কী হবে? ফলে যে বার্তাটি যেভাবে যত জোরালোভাবে দেয়া দরকার ছিলো সেটা দিচ্ছে না। কিন্তু এতে করে ঘটনার পুনরাবৃত্তিও তো ঠেকানো যাচ্ছে না।' অধ্যাপক গায়েন বলছেন, রামুতে প্যাগাডো বানিয়ে দেয়া হয়েছে কিন্তু বিচার শেষ হয়নি। কোন ঘটনারই বিচারকাজ শেষ হয়নি। এটা জরুরী। একই সঙ্গে কারা ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক করছে, তাদেরও চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া জরুরী। সেটা না হলে সমস্যার সমাধান হবে না। এবং এক্ষেত্রে সরকারকে আরো সাহসিকতার পরিচয় দিতে হবে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের চেয়ারম্যানবাড়ি বাজার। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মধ্যে এই চায়ের দোকানে বসেই আড্ডা দিচ্ছিলেন জনাবিশেক স্থানীয় মানুষ। তাদের কারো কারো হাতে স্মার্ট ফোন। +text: তাহির মাহদি দেশটিতে ব্লাসফেমির শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, তবে আইনি শাস্তির বাইরেও ব্লাসফেমির অভিযোগে কয়েকজনকে খুন হতে হয়েছে ক্রুদ্ধ গোষ্ঠীর হাতে। এখন নতুন করে বিতর্কিত এই আইনটি আলোচনায় এসেছে খ্রিস্টান নারী আসিয়া বিবি'র ঘটনাকে ঘিরে। তাঁর আইনজীবী মনে করছেন, চার সন্তানের জননী এই নারী ও তার পরিবারকে নিরাপত্তার জন্যই এখন দেশ ছাড়তে হবে। কিন্তু পাকিস্তানে এমন পরিস্থিতির উদাহরণ একমাত্র আসিয়া বিবিই নন, বরং একই ধরণের অভিযোগ তুলে পাকিস্তান ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে আরও অন্তত চারজনকে। 'পাকিস্তানই আমার দেশ' জন (ছদ্ম নাম) খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের একজন সুপরিচিত নাম যিনি পাকিস্তানেই ব্যাংকিং পেশায় কর্মরত ছিলেন এবং রাজনীতিও করতেন। এই ব্যক্তির জীবনই পাল্টে যায় যখন তার মাত্র তের বছর বয়সী সন্তানকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ না করায় ব্লাসফেমির দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি স্ত্রী ও দু সন্তানসহ যুক্তরাজ্যে শরণার্থীর জীবন যাপন করছেন কিন্তু ওই অভিযোগ এখনো তার পিছু ছাড়ছেনা। এক বালতি পানি, ব্লাসফেমি এবং আসিয়া বিবির ফাঁসি মুসলিম দেশেই বেশি কঠোর 'ব্লাসফেমি' আইন যৌন আসক্তি বলে কি সত্যিই কিছু আছে? পাকিস্তানে আসিয়া বিবিকে বাঁচাতে স্বামীর আকুতি প্রথমে বার্মিংহামের কাছে একটি মসজিদে অবস্থান নিয়েছিলেন কিন্তু ওই এলাকাতেই পাকিস্তানী বংশোদ্ভূতদের বসবাস ছিলো বেশি। "এক রাতে এক ব্যক্তি আমার ঘরের দরজায় নক করলো এবং আমার স্ত্রীকে মসজিদের দেয়ালের পাশে ময়লার ব্যাগ রাখার মাধ্যমে মসজিদকে অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত করলো"। পরে সিসিটিভি ফুটেজে প্রমাণ হলো এটি আসলে অন্য এক নারী ছিলেন। ��িনি জানান, তার সন্তানরা এখনো আতঙ্কিত এবং তারা আর পাকিস্তানে ফিরে যেতে চাইছেনা। জন অবশ্য যেতে চান। "আমি ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবেই যেতে চাই, কারণ ব্রিটিশ পাসপোর্ট নিয়ে আমি বেশি নিরাপদ বোধ করবো।" আসিয়া বিবি'র মুক্তির দাবিতে করা পোস্টার 'আপনাদের কিছু করতে হবে বা বলতে হবে' আসিম সাইদ পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নি সম্প্রদায়েরই সদস্য। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর সমালোচনা করে পোস্ট দেয়ার পরই তিনি টার্গেটে পরিণত হন। ২০১৭ সাল 'রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা' যে পাঁচজন ব্লগারকে অপহরণ করে বলে অভিযোগ উঠেছিলো আসিম ছিলেন তাদেরই একজন। পরে ব্লাসফেমির অভিযোগ করা হয় যা তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। তার দাবি সেনাবাহিনীর সমালোচনার কারণেই তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তোলা হয়। এক বছর আগে যুক্তরাজ্যে আসার পর থেকেই অনেকটা নীরবেই রয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ব্রিটিশ মুসলিমদের মধ্যেও অনেক অসহনশীল ব্যক্তি আছেন। তার ভয় তিনি আক্রান্ত হতে পারেন যে কোনো সময়। পাকিস্তানে আটক থাকা অবস্থায় করার নির্যাতনে অভিজ্ঞতা এখনো তাকে আতঙ্কিত করে। "একবার ব্লাসফেমির সুর উঠলে কারও পক্ষে পাকিস্তানে ফেরা বিপজ্জনক। এক দশক পরে ফিরলেও আপনি খুন হতে পারেন"। এখন আসিয়া বিবির খালাসের ঘটনাকে স্বাগত জানালেও তার মতে পাকিস্তান কখনোই বদলাবেনা। আসিম সাইদ 'আমি কখনোই ফিরবোনা' তাহির মাহদি আহমদিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্য। তিনি তার সম্প্রদায়ের সমর্থনে কাজ করে এমন একটি পত্রিকার প্রকাশক ও ব্যবস্থাপক ছিলেন। সত্তরের দশকেই আহমদিয়াদের অমুসলিম ঘোষণা করা হয় পাকিস্তানে। তাহিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় যে তিনি এমন কিছু প্রকাশ করেছেন যা ধর্ম অবমাননাকর। যদিও এ অভিযোগ তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন। কিন্তু এ অভিযোগেই তাকে আড়াই বছর জেল খাটতে হয়। এমনকি এসময় তার দু ভাই মারা যান কিন্তু তাহির তাদের শেষকৃত্যে পর্যন্ত অংশ নিতে পারেননি। এখন আসিয়া বিবির খালাস পাওয়ার খবরে দারুণ খুশী তিনি কিন্তু তিনিও বিশ্বাস করেন পাকিস্তানে তার সম্প্রদায়ের জন্য কোনো পরিবর্তন আসবেনা। 'জীবন কখনোই এক ধরণের ছিলোনা' জাহিদা'র বাবা হামিদুল্লাহ রেহমাতুল্লাহ খুবই জনপ্রিয় একজন দন্ত চিকিৎসক ছিলেন। সমাজের সব স্তরের রোগীই তার ছিলো ও তারাও তাকে ভালোবাসতো। তার মতে, ধর্মান্ধরা তাকে ঘৃণা করতো শুধু তিনি আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বলে। তিনি নিজের মতো করে প্রার্থনা ঘর তৈরি করেছিলেন আর এটাকেই আখ্যা দেয়া হয়েছিলো ব্লাসফেমি হিসেবে। দু'বার তার ওপর আক্রমণও হয় এবং শেষে প্রায় এগার বছর আগে রোজার সময়ে তাকে অপহরণ করা হয়। তিনি বলেন, "আমার বাবাকে নির্যাতন করা হয়েছে। সুন্নি মুসলিম হতে জোর করা হয়েছে কিন্তু তিনি যখন অস্বীকার করলেন তখন তাকে মাথায় ও বুকে গুলি করা হয়"। তার এক ভাই তখন যুক্তরাজ্যেই ছিলেন। ওই খুনের পর তাদের পরিবার আহমদিয়ারা থাকে এমন একটা জায়গায় সরে আসেন ও যুক্তরাজ্যে আসার আগ পর্যন্ত অনেকটা পালিয়েই ছিলেন তারা সেখানে। জাহিদা বলেন, আসিয়া বিবির ঘটনা সংখ্যালঘুদের জন্য আশার আলো তৈরি করেছে। তিনি অবশ্য বলেন, "কিন্তু কে জানে। ধর্মান্ধরা হয়তো সরকারকে জোর করবে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য"। পাকিস্তানের ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও অধিকার কর্মীরা ব্লাসফেমির অভিযোগ সামনে আনার জন্য সবসময় দেশটির সেনাবাহিনীরই সমালোচনা করে থাকে। +text: মাদাইন সালেহ-র কাসর আল-ফরিদ সৌধ, যা বিশ্বঐতিহ্যের অংশ। এক নতুন ভিসার নিয়মকানুন চালুর মধ্যে দিয়ে সৌদি আরব আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য তাদের দরজা খুলে দিচ্ছে। এতে নারী পর্যটকরা সৌদি আরবে কিরকম পোশাক পরতে পারবেন - তা নিয়েও কড়াকড়ি শিথিল করা হচ্ছে। শুক্রবারই এই রাজতান্ত্রিক দেশটি বিশ্বের ৪৯টি দেশের জন্য ভিসার নতুন নিয়ম চালু করছে - যার বৃহত্তর লক্ষ্য হচ্ছে তেলের ওপর তাদের অর্থনৈতিক নির্ভরতা কমানো। সৌদি পর্যটন মন্ত্রী আহমাদ আল-খতিব একে বর্ণনা করেছেন এক 'ঐতিহাসিক মুহূর্ত' হিসেবে। এতদিন সৌদি আরবে ভিসা দেয়া হতো প্রধানত হজযাত্রী, ব্যবসায়ী এবং বিদেশি শ্রমিকদের জন্য। কিন্তু মি. আল-খতিব বলছেন, "আমাদের এখানে দেখার মতো এমন সব জিনিস আছে যা পর্যটকদের অবাক করবে। এখানে আছে পাঁচটি স্থান যা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট বা বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ, সমৃদ্ধ স্থানীয় সংস্কৃতি এবং মনোমুগ্ধকরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।" সৌদি আরবের দক্ষিণে লোহিত সাগরের তীর বলা হচ্ছে নতুন নিয়ম অনুযায়ী, বিদেশি নারী পর্যটকদের পুরো শরীর ঢাকা আবায়া পরতে হবে না - যা সৌদি নারীরা পরেন - তবে অবশ্যই সংযত-শালীন পোশাক পরতে হবে। পুরুষ সঙ্গীবিহীন একাকী নারীর সৌদি আরব সফরেও কোনো নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। তবে অমুসলিমরা এখনো পবিত্র মক্কা ও মদিনা ��গরীতে যেতে পারবেন না। তা ছাড়া মদ্যপানের ওপর নিষেধাজ্ঞাও বহাল থাকবে। লোহিত সাগরের তীরে সংরক্ষিত বনভূমির হরিণ সৌদি আরব আশা করছে যে সেদেশে পর্যটন খাতে বিদেশি বিনিয়োগ হবে এবং ২০৩০ সাল নাগাদ পর্যটন ৩% থেকে বেড়ে ১০ শতাংশে পৌঁছাবে। এসব পদক্ষেপ সৌদি প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের অর্থনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ - যার মধ্য দিয়ে দেশটির তেলের ওপর নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা চলছে। লোহিত সাগরের তীরে ফারাসানের পুরোনো বাড়ির তোরণ ২০১৭ সালেই সৌদি আরব দক্ষিণাঞ্চলীয় লোহিত সাগর তীরবর্তী ৫০টি দ্বীপে বিলাসবহুল অবকাশ কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করে। আর রাজধানী রিয়াদের কাছে কিদ্দিয়া নামে একটি বিনোদন ও মোটরস্পোর্ট কেন্দ্র তৈরির কাজ শুরু হয়েছে সম্প্রতি। বিবিসির সংবাদদাতা ফ্যাংক গার্ডনার বলছেন, ২০০০ সালেও দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ আসিরে জুনিপার বন-সমৃদ্ধ পার্বত্য এলাকায় পর্যটন সুবিধা চালু হয়েছিল। তবে ৯/১১র সন্ত্রাসী হামলার পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। তিনি বলছেন, লোহিত সাগরতীরবর্তী আসির এলাকায় গরমের সময় স্থানীয়রা বেড়াতে যায়। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অসাধারণ, তবে এটা সৌদি আরব - তাই এক গ্লাস ককটেল নিয়ে সন্ধ্যে উপভোগের চিন্তা না করাই ভালো। আরো পড়ুন: লোহিত সাগরে বিলাসবহুল রিসোর্ট বানাবে সৌদি আরব স্পেনের মতো 'ষাঁড় দৌড়' উৎসব করতে চায় সৌদি আরব সৌদি নারীদের একা বিদেশ ভ্রমণে আর অনুমতি লাগবেনা শুধুই বেড়ানোর জন্য সৌদি আরবে যাবার কথা কি কখনো ভেবেছেন? আপনার পূর্ব-ধারণা যাই থাকুক, সৌদি মন্ত্রীর কথায় 'পর্যটকদের অবাক করার মতো' অনেক কিছুই আছে সেখানে। +text: বিশেষজ্ঞরা হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন যে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম যেভাবে বাংলাদেশে গুরুত্ব হারাচ্ছে, তাতে দেশটির সাফল্য ভেস্তে যেতে পারে। বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশগুলোর একটি। প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনঘনত্ব প্রায় এক হাজার দুশোর কাছাকাছি। যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক যদি কেবল উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে ঠেসে দেয়া হয় তাহলে সেখানকার জনঘনত্ব যা দাঁড়াবে, বাংলাদেশের বর্তমান জনঘনত্ব এখন তাই। অনেকের কাছে এটাই আঁতকে উঠার মতো পরিসংখ্যান। কিন্তু ধরা যাক, অর্ধেক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের তিরিশ কোটি মানুষের সবাইকে নিয়ে যাওয়া হলো উইসকনসিনে। কি দাঁড়াবে অবস্থাটা ? বিশেষজ���ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এখন যে গতিতে কমছে, যতদিনে সেটা থিতু বা স্থির হবে, ততদিনে বাংলাদেশের জনঘনত্ব দাঁড়াবে অনেকটা এরকম। থমকে গেছে সাফল্য সত্তরের দশকের মাঝামাঝি বাংলাদেশে ফার্টিলিটি রেট বা মা প্রতি শিশু জন্ম হার ছিল ছয় দশমিক ২। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল তিন শতাংশ। পরবর্তী দশকগুলোতে বাংলাদেশ এই অতি উচ্চ জন্ম হার নাটকীয়ভাবে কমিয়ে আনে। ফার্টিলিটি রেট এখন নেমে এসেছে দুই দশমিক পাঁচে, আর জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এক দশমিক তিনে। কিন্তু কয়েক দশকের এই সাফল্য এখন ভেস্তে যেতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংখ্যা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম নুর-উন-নবী বলেন, সরকারের অবহেলা ও বারবার নীতি পরিবর্তনই মূলত এর জন্যে দায়ী। “একসময়ে বাংলাদেশের পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচী অনুন্নত দেশগুলোর জন্যে রোল মডেল হলেও এখন আর সেই অবস্থা নেই। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নীতিগত পরিবর্তন, রাজনৈতিক দলগুলোর মতভিন্নতার কারণে কখনো ফ্যামিলি প্ল্যানিং এর বিষয়টি সামনে গেছে, কখনো পেছনে গেছে। ফলে এই বিষয়টি আর সেভাবে গুরুত্ব নিয়ে থাকেনি।” জনবলের অভাব আশির দশকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা জন্ম নিয়ন্ত্রণের উপকারিতা বোঝানোর পাশাপাশি পিল ও কনডম পৌঁছে দিতেন। কিন্তু সরকারের সেই কার্যক্রমে ভাটা পড়েছে। এজন্যে পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের তথ্য, শিক্ষা ও প্রণোদনা বিভাগের পরিচালক গনেশ চন্দ্র সরকার জনবলের অভাবকে দায়ী করলেন। তিনি বলছেন, প্রায় পনেরো বছর ধরে এই দপ্তরে নতুন করে কোন মাঠকর্মী নিয়োগ করা হয়নি। ফলে সেখানে একটি শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। আরেকটা সমস্যা হচ্ছে, মাঠ পর্যায়ে যে পদগুলো রয়েছে, সেগুলো তৈরী হয়েছে সত্তরের দশকের শেষদিকে। তখন প্রতি ছয়শ পরিবারের জন্য একজন করে কর্মী নির্দিষ্ট করা হয়েছিল। কিন্তু জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এখন একজন কর্মী অনুপাতে পরিবার হয়েছে বারোশ থেকে পনোরোশো। ফলে কর্মীরা আর আগের মতো সবার কাছে যেতে পারছেন না। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মজিবুর রহমান ফকির বলছেন, কর্মী সংকটের বিষয়টি তারা সমাধানের চেষ্টা করছেন। এছাড়া যেসব অঞ্চল পিছিয়ে রয়েছে সেসব ক্ষেত্রেও তারা বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করার উদ্যোগ নিয়েছেন। “ আমরা উনত্রিশ হাজার মাঠকর্মী নিয়োগ করতে যাচ্ছি। ইতোমধ্যেই বেশকিছু নিয়োগ করা হয়েছে। সবার নিয়োগ হয়ে গেলে আবার বাড়ি বাড়ি প্রচারণার কাজটি শুরু হয়ে যাবে।” তিনি বলেন, ‍‚আমরা দেখেছি, হাওর অঞ্চলসহ দেশে কিছূ অঞ্চলে জন্মহার এখনো বেশি রয়েছে। সেসব এলাকায় বেসরকারি সংস্থাগুলোর সাথে মিলে আমরা একটি টাস্কফোর্স গঠন করছি, যা সেখানে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবে।” প্রয়োজন নতুন কৌশল পিল ও কনডমের মতো সাময়িক জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবহারে সচেতনতা তৈরী করতে বাংলাদেশ অনেকটাই সফল হলেও, এখনো দীর্ঘমেয়াদী পদ্ধতি গ্রহণে বেশিরভাগ দম্পতিরই অনীহা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন সরকারের উচিত এক্ষেত্রে বিশেষ প্রচারণা ও আগ্রহ তৈরী করা। জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটের সাবেক পরিচালক ডা. আহমেদ আল সাবির বলছিলেন পরিবার পরিকল্পনা ব্যবস্থপনায়ও এখন পরিবর্তন আনা দরকার। “এখন বাংলাদেশে সবার জন্যই একই ধরণের কর্মসূচী নেয়া হচ্ছে। কিন্তু এখন তো জনসংখ্যার সচেতনতায় কিছুটা সাফল্য পাওয়া গেছে। সুতরাং এখন দরকার এলাকা বা জনগোষ্ঠী অনুযায়ী বিশেষ পরিকল্পনা নেয়া।” তিনি আরও বলেন, “চিকিৎসকদের আরো প্রশিক্ষণ দেয়ার দরকার আছে। তার চেয়ে যেটা বেশি দরকার, তা হলো স্বল্প মেয়াদী পদ্ধতির বদলে দীর্ঘমেয়াদী পদ্ধতি বা স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণে সবাইকে উৎসাহিত করা। একটি ধারণা আছে, যে দীর্ঘমেয়াদী পদ্ধতি গরীবদের জন্য। এই ভুলটিও ভেঙ্গে দিতে হবে।” অধ্যাপক নুর-উন-নবী বলছেন, সরকার জন্মহার বৃদ্ধির হার ও ফার্টিলিটি রেট কমাতে সফল হয়েছে। কিন্তু এখন যে হার রয়েছে, এই হারে চললেও, দেশের আয়তন অনুপাতে ভবিষ্যতে জনসংখ্যার হার অনেক বেশী হবে। এই হারে চললে ২০৮০ সাল নাগাদ একটি স্থিরতা আসবে। কিন্তু ততদিনে জনসংখ্যা অনেক বেশি হয়ে যাবে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের সাফল্য একসময় উন্নয়ন নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি কেড়েছিল। কিন্তু সেই সাফল্য বাংলাদেশ ধরে রাখতে পারছে না কেন? +text: রিজার্ভ নিয়ে উদ্বিগ্ন নয় বাংলাদেশ ব্যাংক তাঁদের মতে, রপ্তানি কমে আমদানি বেড়ে যাওয়াসহ বেশ কিছু কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। তবে এখন যে রিজার্ভ আছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেটাকে সন্তোষজনক বলে মনে করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৯৬০ কোটি ডলারে, যা দিয়ে তিন ��াসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব নয়। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি নেওয়ার কারণে রিজার্ভের উপর চাপ থাকবে না। অর্থনীতিবিদদের অনেকেই অবশ্য এমনটা মানতে রাজি নন। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, সংকোচন নীতির কারণে রিজার্ভের ওপর চাপ পড়বে না, এমন বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, সংকোচন মুদ্র্রানীতি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এছাড়াও তিনি বলেছেন, ভাড়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ক্ষেত্রে জ্বালানি তেল আমদানির মাত্রা বেড়েছে। আমদানি বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি রিজার্ভের উপর চাপ সৃষ্টির অন্যতম একটি কারণ বলে তিনি মনে করেন। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী দাবি করেছেন, রিজার্ভের ওপর চাপ থাকবে না। আশংকিত কিংবা আতংকিত হওয়ার মতো কিছু হয়নি বলেই তিনি মনে করেন। মি: সিদ্দিকী জানান, সেপ্টেম্বর মাসে ইউরোপীয় অভিন্ন মূদ্রা ইউরোসহ বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রা এবং সোনার দাম কমে যাওয়ায় রিজার্ভ কিছুটা কমেছে। সেটাকে নেতিবাচকভাবে দেখার কিছু নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন। তাই বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সন্তোষজনক বলেই দাবি করছে। কিন্তু মির্জা আজিজুল ইসলাম মনে করেন, আমদানি ব্যয় এমুহুর্তে কমিয়ে আনা সম্ভব নয়। সেখানে তিনি সরবরাহ বাড়ানোর উপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সরবরাহের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়ায় বৈদেশিক সহায়তার অর্থ ছাড় করানোর ব্যাপারেও অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হচ্ছে না। এর সাথে কমেছে রপ্তানি। তিনি মনে করেন, রেমিটেন্স এখন আগের তুলনায় কিছুটা বেশি থাকলেও সব মিলিয়ে রিজার্ভের উপর চাপ থাকবে। জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী বলেন, এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের আমদানি বিল পরিশোধ করার বিষয়টিও রিজার্ভ কমে যাওয়ার একটি কারণ হতে পারে। কিন্তু আমদানি ব্যয় কমে আসবে এবং রিজার্ভ বেড়ে যাবে বলে তিনি আশা করেন। অর্থনীতিবিদদের অনেকেই অবশ্য বলছেন, এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় এমুহুর্তে সরবরাহ বাড়ানো অর্থাৎ বৈদেশিক সহায়তার অর্থ বেশি করে ছাড় করানো এবং রপ্তানি বাড়ানোর ওপর জোর দিতে হবে। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হাজার কোটি ডলারের নিচে নেমে আসায় অর্থনীতিতে এক ধরনে��� চাপ সৃষ্টির আশংকা করছেন বিশ্লেষকরা। +text: নাসার পারসিভেয়ারেন্স মহাকাশযানটির রোভার অংশটিতে রয়েছে অবতরণের কোনরকম সমস্যা এড়ানোর জন্য উন্নত প্রযুক্তি। বিবিসির বিজ্ঞান বিষয়ক সংবাদদাতা জনাথান এমোস বলছেন, নাসার মহাকাশযান পারসিভেয়ারেন্স-এর আজ গ্রেনিচ মান সময় প্রায় রাত ন'টায় মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠে অবতরণ করার কথা রয়েছে। ছয় চাকার এই স্বয়ংচালিত যানটি পৃথিবী থেকে তার ৪৭০ মিলিয়ন কিলোমিটার (৪৭ কোটি মাইল) পথের যাত্রা শুরু করেছিল সাত মাস আগে। এই মহাকাশ মিশনের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং অংশ হবে মঙ্গলের পৃষ্ঠে যানটির অবতরণের মুহূর্তটি। যানটিকে নিরাপদে লাল গ্রহটির পৃষ্ঠে অবতরণ করতে হবে। এর আগে বহু মহাকাশযান এই কাজ করতে গিয়ে বিভ্রান্ত হয়ে গেছে। কিন্তু পারসিভেয়ারেন্স যদি সফল হয়, তাহলে মঙ্গলগ্রহে অতীতে কোন প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা তা জানার অভূতপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হবে। এর আগে এত উন্নত যন্ত্রপাতি নিয়ে কোন গ্রহে বৈজ্ঞানিক মিশন পাঠানো হয়নি এবং এত সম্ভাবনাময় একটা স্থানকে টার্গেট করে কোন রোবটও এর আগে কখনও নামানো হয়নি। যেখানে এই মহাকাশ রোবটের মঙ্গলপৃষ্ঠ স্পর্শ করার কথা সেই স্থানটি হল জেযেরো ক্রেটার। একসময় এই গহ্বরের স্থানটিতে বিশাল একটি হ্রদ থাকার লক্ষণ উপগ্রহে পাওয়া ছবি থেকে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন। তাদের ধারণা এই হ্রদটিতে প্রচুর পানি ছিল এবং সম্ভবত সেখানে জীবনও ছিল। নিচে দেখানো হচ্ছে কীভাবে রোভার যান মঙ্গলে নামছে আরও পড়তে পারেন: পারসিভেয়ারেন্স অবতরণের গুরুত্বপূর্ণ সময়সূচি পারসিভেয়ারেন্স যেখানে নামবে সেই জেযেরো গহ্বরের ধুলাবালুর মধ্যে থেকে নমুনা সংগ্রহ করবে রোবট যানটি, যা বিশ্লেষণ করে দেখা হবে গ্রহটিতে অতীতে জৈব কোন কর্মকাণ্ডের হদিস ছিল কিনা। সবচেয়ে লক্ষণযুক্ত ও সম্ভাবনাময় নমুনা পৃথিবীতে পাঠানো হবে ভবিষ্যত মিশনের প্রস্তুতির জন্য। "কিন্তু মঙ্গলের পৃষ্ঠে ভবিষ্যতের মিশন পাঠানোর আগে আমাদের আগে মঙ্গলে ঠিকমত অবতরণ করতে হবে। আর সেটাই সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ," বলছেন নাসায় পারসিভেয়ারেন্সের উপ প্রকল্প ম্যানেজার ম্যাট ওয়ালেস। "মহাকাশ মিশনে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জগুলোর অন্যতম হল সফল অবতরণ। মঙ্গলগ্রহে এর আগে যেসব মিশন পাঠানো হয়েছে তার মধ্যে ৫০ শতাংশ যান মঙ্গলের পিঠে সফলভাবে অবতরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ক���জেই আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন জেযেরো গহ্বরে রোবট যানটি নিরাপদে নামানো।" মঙ্গলগ্রহে কেমন হবে আপনার বাড়ি? অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে মঙ্গলগ্রহে পাঠানো হয়েছে পারসিভেয়ারেন্স-কে। মঙ্গলগ্রহে নভোযান অবতরণের ১৪টি প্রচেষ্টা আগে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সফল হয়েছে আটটি আর এর সবগুলোই ছিল আমেরিকান মিশন। তবে ১৯৯৯ সালে একবার নাসার মঙ্গল মিশন ব্যর্থ হয়েছিল। তাই আজ (বৃহস্পতিবার) ক্যালিফোর্নিয়ার পাসাডেনায় জেট প্রোপালসান গবেষণাগারে মিশন কেন্দ্রে রুদ্ধ শ্বাসে অপেক্ষা করবেন প্রকৌশলীরা। আমেরিকান মহাকাশ সংস্থা নাসা একটা ঐতিহাসিক মুহূর্তের জন্য রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করছে। +text: ব্রোঙ্কস চিড়িয়াখানায় একটি বাঘ, ছবিটি ২০১৭ সালের এটি একটি মালায়ান বাঘিনী। বাঘিনীর নাম নাদিয়া। এর সাথে আরো ছয়টি বাঘের এই সংক্রমণ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিউইয়র্কের ব্রোঙ্কস চিড়িয়াখানায় থাকে বাঘিনীটি। চিড়িয়াখানার একজন কর্মীর মাধ্যমেই বাঘিনীর মধ্যে করোনাভাইরাসের জীবানু ছড়ায়। গত মাস থেকেই উপসর্গ দেখা যেতে শুরু করে বাঘিনীর মধ্যে। শুষ্ক কাশি দেখা যায় যার আগে সেই কর্মীর সরাসরি সংস্পর্শে এসেছিল বাঘিনীটি। চিড়িয়াখানার প্রধান পশু চিকিৎসক পল ক্যালে বলেন, "এই প্রথম আমরা পুরো বিশ্বে এমন একটি ঘটনার প্রমান পাই যেখানে একজন ব্যক্তির দ্বারা একটি পশুর মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয় এবং পশুটি এখন আসলেই অসুস্থ।" চিকিৎসকরা এই সংক্রমণের সকল আলামত ও দৃষ্টান্ত অন্য সব চিড়িয়াখানা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাথে শেয়ার করছে যাতে অন্যরা সতর্ক হতে পারে। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, যে বাঘিনী অসুস্থ তার জন্য আলাদা অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে ও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আমরা এর দ্বারা যেসব তথ্য ও ধারণা পাবো সেটা ছড়িয়ে দেবো যাতে করে নোভেল করোনাভাইরাস সম্পর্কে বিশ্বও জানতে পারে যে এর আচরণ কিরুপ। বাঘিনী নাদিয়া, তার বোন আজুল এবং আরো দুটি আমুর প্রজাতির বাঘের করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা গেছে। বাঘগুলোর সাথে তিনটি আফ্রিকান সিংহেরও করোনাভাইরাস উপসর্গ দেখা গেছে। বাঘ ও সিংহ সবগুলোরই খাবারের স্বাদে একটা অসামঞ্জস্য দেখা গেছে। এছাড়া বাকিরা পশুচিকিৎসকদের অধীনে আছে এবং তুলনামূলক ভালো আছে। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলছে তারা ঠিক জানে না ���কটি পশুর দেহে কীভাবে এই ভাইরাসটি কাজ করে। সংক্রমণের ফলে একেক প্রাণি একেকভাবে সাড়া দিতে পারে। সব প্রাণিকেই পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। এই চিড়িয়াখানায় বাঘ বা সিংহ প্রজাতির আরো যেসব প্রাণি আছে তারা স্বাভাবিক অবস্থাতেই আছে। এদের মধ্যে কোনো উপসর্গও নেই। ১৬ই মার্চ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সকল চিড়িয়াখানা দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ আছে। কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? করোনাভাইরাসের উৎপত্তি কোথায়, কেন এতো প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস: কীভাবে শনাক্ত করছে বাংলাদেশ? করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরিতে অগ্রগতি কতদূর? যুক্তরাষ্ট্রে চার বছরের একটি বাঘিনীর করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। +text: মহাসড়কে সহিংসতার শিকার একটি বাস। এ ঘটনায় আবারও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বাংলাদেশের মহাসড়কের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি। যদিও মহাসড়কে এ ধরণের ঘটনা নতুন কিছু নয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ যাবার পথে এমন দুর্বৃত্তের কবলে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান হালিমা নাসরিন ও তার পরিবার। মিসেস নাসরিন বিবিসি বাংলাকে জানান তার সেই রোমহর্ষক অভিজ্ঞতার কথা। "আমি আমার স্বামী আর দুই বাচ্চা ঢাকা থেকে ময়মনসিংহে যাচ্ছিলাম। রাত তখন সাড়ে ১২টা কি ১টার মতো হবে। তখন আমাদের গাড়িটা টঙ্গি আর গাজীপুরের মাঝামাঝি কোথাও জ্যামের মধ্যে পড়েছিল। ঠিক ওই সময় আমাদের সামনে থাকা একটা ট্রাক থেকে পাঁচ ছয়জন, রাম দা, চাপাতি নিয়ে আমার গাড়ি ঘিরে ধরে আর এলোপাথাড়ি কুপিয়ে কাঁচ ভেঙ্গে ফেলে।" "এরপর আমার বাচ্চাদের গলায় রাম দা ধরে বলে যে যা আছে সব দিয়ে দে। আমি মুহূর্তেই সব দিয়ে বের করে দেই, যা কিছু ছিল। গয়না, ব্যাগ, মোবাইল সবকিছু। মাত্র তিন-চার মিনিটে সব কিছু হয়ে যায়। এতো ভয় পেয়েছিলাম যে এখনও রাতে ঘুমাতে পারিনা।" ঝুঁকি নিয়ে দূরপাল্লার বাসের ছাদে উঠে ভ্রমণ করছেন যাত্রীরা। আরও পড়তে পারেন: মহাসড়কে বাসে ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় এখনই কী করা যায় বাংলাদেশে মহাসড়ক সংস্কারে স্থায়ী সমাধান নেই কেন ঈদ ২০১৯: যানজটের কারণে মহাসড়কে সন্তান প্রসব মিসেস নাসরিন এবং তার স্���ামী সন্তানদের কেউ আজও সেই হামলার ভয়াবহতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন নি। তার মতো যেকোনো সময় এমন হামলার আশঙ্কায় থাকেন চট্টগ্রামের বাসিন্দা ইসমত জাহানও। পেশাগত কাজে তাকে প্রায়ই ঢাকায় আসতে হয়। কিন্তু মহাসড়কে একা চলাচলে তিনি প্রতিনিয়ত থাকেন আতঙ্কের মধ্যে। ইসমত জাহান বলেন, "ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের পথে ছিনতাই/ডাকাতির ভয় তো আছেই। কিন্তু একটা মেয়ে হিসেবে আমার সবচেয়ে বড় ভয় হল নিজের যে সম্মানটুকু আছে, সেটার যেন হানি না হয়।" এজন্য মিস জাহান চেষ্টা করেন ভ্রমণের সময় নিজের সঙ্গে কাউকে সঙ্গে রাখতে। আর একা ভ্রমণ করতে হলে তিনি কাছের মানুষদের কাছে নিজের লোকেশন শেয়ার করে রাখেন এবং মোবাইল ফোনে যুক্ত থাকেন। যেন বিপদ আপদে তার অবস্থান নিশ্চিত করা যায়। মহাসড়কে পুলিশের চেকপোস্ট। মহাসড়ক পুলিশ কী বলছে? মহাসড়কে এই ধরনের সহিংসতার ঘটনা নিয়ে কোন জরিপ বা গবেষণা না হলেও পুলিশের দাবি এ ধরনের অপরাধ আগের চাইতে অনেকটাই কমে এসেছে। কিন্তু আগের মতো পেশাদারি সংঘবদ্ধ দল আর নেই বলে জানান মহাসড়ক পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম। "আগে যেটা ছিল যে পেশাদারি ডাকাতরা বড় বাসে বা মালবাহী ট্রাকগুলো আটকে লম্বা সময় নিয়ে লুটপাট করতো, মানুষের ওপর ছুরি মেরে দিতো, হত্যা করতো-এ ধরনের ঘটনা বছর দুয়েকের মধ্যে আর হয়নি।"- এমনটিই জানান মিস্টার ইসলাম। তিনি বলেন, "পেশাদার ডাকাতি সংঘবদ্ধ গ্রুপ আর নাই। এগুলোকে ভেঙে ফেলা হয়েছে। কারণ আমরা এগুলোকে খুঁজে বের করে শাস্তি দিয়েছি।" তবে এখনও কিছু চক্র সুযোগ বুঝে হামলা চালাচ্ছে বলে স্বীকার করেন আতিকুল ইসলাম। "মাঝেমধ্যে যেটা হয় যে, রাস্তায় জ্যাম পড়লে হকারের বেশে এসে ছিনতাই করে। এগুলোও এখন নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করি কোথাও জ্যাম পড়লে সেখানে মোটর সাইকেল নিয়ে মুভমেন্ট করার, যেন কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে।" মহাসড়কের নিরাপত্তায় কাজ করছেন হাইওয়ে পুলিশ সদস্যরা। মহাসড়কে নিরাপত্তা কেন নিশ্চিত করা যায়নি? সহিংসতা আগের চাইতে কমেছে বলে পুলিশের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করলেও সার্বিক নিরাপত্তা এখনও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছায়নি বলে মনে করেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তার অভিযোগ, ঢাকার সঙ্গে সংযোগকৃত ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, নরসিংদী, জয়দ���বপুর, এলেঙ্গা এমনকি সিলেট মহাসড়ক সাধারণ যাত্রীদের জন্য এখনও পুরোপুরি নিরাপদ হতে পারেনি। বাংলাদেশের সড়ক, মহাসড়ক এবং পরিবহন ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজড সিস্টেমের মধ্যে আনা না গেলে পরিস্থিতির কোন পরিবর্তন হবে না বলে তিনি মনে করেন। মিস্টার চৌধুরী বলেন, "পুলিশ শুধু অজুহাত দেয় যে তাদের জনবলের অভাব রয়েছে, তাদের হাইওয়ে পুলিশ নেই, জেলা পুলিশ নেই। কিন্তু উন্নত বিশ্বে দেখা যায়, তারা অল্প সংখ্যক জনবল দিয়ে, বিশাল সড়কের নেটওয়ার্ক তারা ডিজিটালি মনিটরিং করে আর এভাবেই তারা নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।" বাংলাদেশের মহাসড়কে এখনও অনেক মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন। এছাড়া বাংলাদেশের যারা সড়ক নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত, বিশেষত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিআরটিএ- তাদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। এমন অবস্থায় সীমিত বাজেট ও সীমিত জনবল দিয়ে কিভাবে মহাসড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় সে বিষয়ে প্রশাসনকে দ্রুত উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি। হাইওয়ে পুলিশের সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী , সারা দেশের সবকটি মহাসড়কে মোট ৯৯৩টি ঝুঁকিপূর্ণ স্পট রয়েছে। এসব পয়েন্টে নিরাপত্তা বাড়াতে যে পরিমাণ প্রশিক্ষিত জনবল ও প্রযুক্তি সহায়তার প্রয়োজন তার যথেষ্ট অভাব রয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সম্প্রতি সাতক্ষীরায় ভ্যান ছিনতাইয়ের সময় এক কিশোর চালকের ওপর হামলা চালিয়ে তার মাথা ফাটিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। গুরুতর আহত অবস্থায় শিশুটি এখন ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। +text: সেন্টিনেলিজ বাসিন্দাদের নারকেল দিচ্ছেন টিএন পন্ডিত সম্প্রতি এই দ্বীপটির বাসিন্দাদের হাতে আমেরিকা থেকে আসা একজন পর্যটক নিহত হওয়ার পর এই বাসিন্দাদের ওপর সবার নজর পড়েছে, যে গোত্রের মানুষরা এখনো বিশ্বের মানুষজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। গত ১৭ই নভেম্বর জেলেদের নৌকায় করে ওই দ্বীপপুঞ্জের সেন্টিনেল দ্বীপে যান জন অ্যালেন। জেলেরা জানিয়েছেন, তারা দেখতে পেয়েছেন দ্বীপের আদিবাসী লোকজন সৈকতে একটি মৃতদেহ টেনে নিয়ে যাচ্ছে এবং কবর দিচ্ছে। এখনো তার মৃতদেহ উদ্ধার করতে পারেনি ভারতীয় কর্মকর্তারা। কিন্তু এই আদিবাসী গোত্র সম্পর্কে কী জানা যাচ্ছে? সেন্টিনেল দ্বীপে বসবাসকারী এই গোত্রের মানুষজনকে ডাকা হয় সেন্টিনেলিজ নামে। সত্তরের দশ�� থেকে এই আদিবাসীদের নিয়ে কাজ শুরু করলেও, সরকারি একটি অভিযানের অংশ হিসাবে ১৯৯১ সালে ওই দ্বীপে গিয়ে উত্তেজনার মুখে পড়েছিলেন টিএন পন্ডিত। বিবিসির কাছে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর কী ধরণের সরঞ্জাম আছে? 'তাদের কান্না আমি কখনোই ভুলবো না' হুয়াওয়ে মোবাইল কোম্পানির বিরুদ্ধে আপত্তি কেন? এরশাদ অসুস্থ, সরকারের সাথে আলোচনা করে কে? সেন্টিনেলিজ আদিবাসীর সঙ্গে টিএন পন্ডিত ''দ্বীপটিতে যাওয়ার পর একসময় আমার দলের লোকজনের কাছ থেকে খানিকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলাম এবং সৈকতের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলাম। একজন তরুণ সেন্টিনেল বাসিন্দা অদ্ভুত আঁকিবুঁকি করা চেহারা নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে এলো, ছুরি বের করলো এবং সংকেত দিলো যেন আমার মাথা কেটে ফেলবে। আমি তাড়াতাড়ি আমার নৌকা ডাক দিয়ে পালিয়ে এলাম।'' ''তার শারীরিক ভাষায় এটা পরিষ্কার ছিল যে, আমি এই দ্বীপে স্বাগত নই।'' নিষিদ্ধ চেহারা ১৯৭৩ সালে প্রথম ওই দ্বীপে যান টিএন পন্ডিত। তখন তারা এই আদিবাসীদের নিয়ে একটি গবেষণা কার্যক্রম শুরু করেন। তারই অংশ হিসাবে সেন্টিনেলিজ আদিবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করেন তারা। তিনি বলছেন, ''ওই আদিবাসীদের জন্য আমরা হাঁড়িপাতিল, অনেক নারকেল, লোহার তৈরি যন্ত্রপাতি নিয়ে গিয়েছিলাম। পাশের আরেকটি অনজে গোত্রের তিনজন সদস্যকেও আমাদের সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলাম যাতে তারা আমাদের সেন্টিনেলিজ লোকজনের কথার অনুবাদ আর আচরণের ব্যাখ্যা করতে পারে।'' ''কিন্তু সেন্টিনেলিজ যোদ্ধারা খুবই রাগী আর অদ্ভুত মুখে আমাদের মুখোমুখি হয়, তাদের হাতে ছিল তীর ধনুক। যেন বহিরাগতদের হাত থেকে তাদের নিজেদের ভূমি রক্ষার জন্য সবাই প্রস্তুত ছিল।'' ''হাত-পা বেঁধে রাখা একটি জীবন্ত শুকর তাদের উপহার দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটিকে তারা বর্শায় বেধে ফেলে এবং পরে মাটিতে পুতে রাখে। '' এরপরে এই গোত্রটি সম্পর্কে খুবই কম জানা গেছে। সেন্টিনেলিজদের বসবাসের এলাকা উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপ এমনটি পোর্ট ব্লেয়ারে একটি প্রচলিত বিশ্বাস ছিল যে, সেন্টিনেল দ্বীপের বাসিন্দারা হল আসলে পাঠান দণ্ডপ্রাপ্তরা (আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের একটি গোত্র), যারা ব্রিটিশ কারাগার থেকে পালিয়ে দ্বীপটিতে লুকিয়ে রয়েছে। যোগাযোগ স্থাপন হলেও কোন সম্পর্ক নয�� এই রহস্যময় আদিবাসী গোত্র সম্পর্কে সত্তরের দশক থেকে শুরু করেন পন্ডিত এবং তার সহকর্মীরা। ১৯৯১ সালে অবশেষে তারা কিছুটা সাফল্য লাভ করেন। ''আমরা দ্বিধাদ্বন্ধে পড়ে গিয়েছিলাম যে, কেন তারা আমাদের গ্রহণ করলো। '' ''আমাদের সঙ্গে দেখা করার বিষয়টি ছিল তাদের সিদ্ধান্ত এবং সেটা তাদের শর্ত মতে হয়েছে। আমরা নৌকা থেকে লাফ দিয়ে নেমে গলা পানিতে দাঁড়িয়ে নারকেল এবং অন্যান্য উপহারগুলো তাদের বিতরণ করেছি। কিন্তু তাদের দ্বীপে নামার অনুমতি আমাদের দেয়া হয়নি।'' টি এন পন্ডিত পন্ডিত বলছেন, তারা হামলা করবে বলে তিনি কখনো ভীত ছিলেন না, তবে এই আদিবাসীদের কাছাকাছি গেলে সবসময়ে তিন সতর্ক ছিলেন। ''প্রতিবার যোগাযোগের সময় তারা আমাদের হুমকি দিয়েছে, কিন্তু কখনোই সেটা এমন সীমায় পৌঁছায় নি তারা আমাদের হত্যা করবে বা আমরা কেউ আহত হয়েছি। যখনি তারা ক্ষোভ দেখিয়েছে, আমরা পিছিয়ে এসেছি।'' ''সেন্টিনেলিজরা খুব লম্বাও নয়, খুব খাটোও নয়। তারা তীর ধনুক বহন করে। তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলছিল, কিন্তু আমরা তাদের ভাষা বুঝতে পারিনি। তবে ওখানে অন্য যে গোত্রগুলো বাস করে, ভাষাটি অনেকটা তার কাছাকাছি ধরণের। '' ''আমরা ইশারায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু তারা তখন নারকেল সংগ্রহে ব্যস্ত ছিল।'' এই আদিবাসী গোত্রের লোকজন তীর ধনুক দিয়ে মাছ শিকার করে বলে জানা গেছে। বুনো শুকর, শিকড়, বনের ফলমূল আর মধু তাদের প্রধান খাবার। তবে এই বাসিন্দারা সাগরে চলাচলকারী লোকজনের কাছে পরিচিত নন। একটি হেলিকপ্টার লক্ষ্য করে তীর ছুড়ছেন একজন সেন্টিনেলিজ কাপড় বিহীন এই গোত্রটি সম্পর্কে এখন এরকম উপহার দেয়ার মাধ্যমে গবেষণা কার্যক্রম বাতিল করে দিয়েছে ভারতের সরকার। কঠোরভাবে রক্ষণশীল নিজেদের এলাকার ব্যাপারে এই বাসিন্দারা খুবই রক্ষণশীল এবং বাইরের কাউকে পেলেই তারা আক্রমণ করে থাকে। ২০০৬ সালে দুই জন জেলে উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপের কাছাকাছি গেলে আদিবাসীদের হামলায় নিহত হয়। ২০০৪ সালের সুনামির পর যখন ভারতীয় কর্মকর্তারা দ্বীপটির ওপর আকাশ থেকে জরিপ করার চেষ্টা করে, তখন দ্বীপের একজন বাসিন্দা তীর ছুড়ে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত করার চেষ্টা চালায়। সেন্টিনেলিজদের একটি দল বর্ণিল ইতিহাস আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে মূলত চারটি আফ্রিকার উপজাতি গোত্র বাস করে। গ্রেট আন্দামানিজ, অনেজ, জারাওয়া এবং ���েন্টিনেলিজ। নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বাস করে দুইটি মঙ্গোলয়েড গোত্র-শোম্পেন এবং নিকোবারিজ। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকরা ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের পর এই দ্বীপে একটি কারা কলোনি স্থাপন করে, যেখানে বন্দীদের আটকে রাখা হতো। কিছুদিন পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গেই তাদের লড়াই শুরু হয়ে যায়। ব্রিটিশ সৈন্যবাহিনী বাহিনীর সঙ্গে গ্রেটার আন্দামালিজ বাহিনীর সঙ্গে প্রথম লড়াই হয় ১৮৫৯ সালে, যার ফলাফল সহজেই ধারণা করা যেতে পারে। যুদ্ধ এবং রোগের বিস্তারের কারণে স্থানীয় গোত্রগুলোয় দ্রুত জনসংখ্যা কমতে শুরু করে। তবে সেন্টিনেলরা বাস করতো একটি দূরের দ্বীপে, ফলে এই দ্বীপের বাসিন্দা ঔপনিবেশিক শাসনের আওতার বাইরে থেকে যায়। সেন্টিনেলিজ আদিবাসীদের হাতে নিহত হয়েছেন আমেরিকান পর্যটন জন অ্যালেন চাউ সহিংসতা কিন্তু তাদের সহিংসতার প্রবণতা এখনো রয়ে গেছে। বিষয়টি অবাক করেছে টিএন পন্ডিতকে। ''সেন্টিনেলিজরা একটি শান্তিপ্রিয় জাতি ছিল। তারা মানুষজনের ওপর হামলা করতো না। তারা আশেপাশের এলাকায় কখনো যেতো না বা কারো সাথে ঝামেলাও তৈরি করতো না। এটা আসলে একটা বিরল ঘটনা।'' ভারতীয় নৌবাহিনী এবং কোস্ট গার্ড এই এলাকার আশেপাশে নিয়মিত টহল দিতে চায়। কিন্তু তা সত্ত্বেও মাঝেমাঝে এরকম অনুপ্রবেশ ঘটে এবং আমেরিকান এই পর্যটকের অনেক মানুষজন দ্বীপটিতে চলে যান। টিএন পন্ডিত মনে করেন, আরো দ্বীপবাসীদের জন্যে যোগাযোগের উদ্যোগ শুরু করা উচিত। ''আমাদের অবশ্যই আবারো চেষ্টা করা উচিত এবং তাদের সঙ্গে সীমিত আকারে যোগাযোগ শুরু করা উচিত। কিন্তু তাদের বিরক্ত করা অবশ্যই আমাদের উচিত হবে না। তারা আলাদা থাকতে চাইলে সেটিকে আমাদের সম্মান জানানো উচিত।''রবণ ভারতের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের একটি প্রত্যন্ত দ্বীপে ৬০ হাজার বছরের বেশি সময় ধরে সবার অগোচরে বসবাস করছে একটি আদিবাসী গোত্র সেন্টিনেলিজ। +text: উটের পাল সৌদি আরব থেকে কাতারে ফিরে আসছে। ইতোমধ্যে পনের হাজার উট এবং দশ হাজার ভেড়া সীমান্ত অতিক্রম করে কাতারে ফিরে এসেছে। ফিরে আসা উট এবং ভেড়ার পালের জন্য কাতার একটি জরুরী আশ্রয় কেন্দ্র খুলেছে। সেখানে পানি এবং পশু খাদ্যের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কাতার যেহেতু একেবারে ছোট একটি দেশ, তাই অনেক কাতারি তাদের উট এবং ভেড়া সৌদি আরবের বিভিন্ন চারণভূমিতে নিয়ে রাখে। এ মাসের শুরুতে সৌদি আরব সহ কয়���কটি উপসাগরীয় দেশ কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করে। কাতার ইসলামি জঙ্গীবাদকে মদত দিচ্ছে অভিযোগ তুলে তারা এই পদক্ষেপ নেয়। কাতার অবশ্য এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। আরও পড়ুন : সাদ্দামের ফাঁসির সময়ে কেঁদেছিলেন যে মার্কিন সৈন্যরা কাতারের পৌর এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ফিরে আসা উট এবং ভেড়ার পালের জন্য নতুন জায়গা খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত তাদের অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরেই রাখা হবে। কাতারের একজন কর্মকর্তা জানান,এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ হাজার উট এবং ভেড়া সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে সাম্প্রতিক সময়ে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ভেড়া এবং উটের পাল সীমান্ত অতিক্রম করে কাতারে ঢুকছে। কাতারি পশু পালকরা সৌদি আরবের এই পদক্ষেপে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আলী মাগারেহ নামে একজন রয়টার্সকে বলেন, "আমরা এসব রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হতে চাই না। আমরা মোটেই খুশি নই।" . সৌদি আরব বলেছে, তাদের পশু চারণ ভূমি থেকে কাতারের সব উট এবং ভেড়া সরিয়ে নিতে হবে। দু দেশের মধ্যে তীব্র উত্তেজনার মধ্যে সৌদি আরব এই সর্বশেষ পদক্ষেপ নিল। +text: বিশ্বব্যাপী এখনো নবজাতক শিশু মৃত্যুর অন্যতম বড় কারণ অপরিণত শিশু জন্ম এর ফলে প্রিম্যাচিউরড বেবি বা অপরিণত শিশু, অর্থাৎ মাতৃগর্ভে ৩৭ সপ্তাহ কাটানোর আগেই জন্ম নেয়া শিশুদের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হবে। একটা প্লাস্টিকের ব্যাগের মতো দেখতে এই কৃত্রিম জরায়ুর ভেতরে থাকবে অপরিণত শিশুটি, তার সাথে জুড়ে দেয়া পাইপ দিয়ে তার জন্য আসবে রক্ত ও অন্যান্য তরল। ঠিক মায়ের গর্ভের মতোই পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে সেখানে। বিশ্বব্যাপী এখনো নবজাতক শিশু মৃত্যুর অন্যতম বড় কারণ অপরিণত শিশু জন্ম। নেদারল্যান্ডসের ম্যাক্সিমা মেডিকেল সেন্টারে এই মূহুর্তে এই কৃত্রিম মাতৃগর্ভ তৈরির কাজ চলছে, যা প্রধানত খুবই অপরিণত অবস্থায় জন্ম নেয়া শিশুদের কথা মাথায় রেখে করা হচ্ছে। লিসা ম্যান্ডিমেকার কৃত্রিম মাতৃগর্ভের নকশা তৈরি করছেন। তিনি বলছেন, "কৃত্রিম মাতৃগর্ভ হবে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগের মত। নির্ধারিত সময়ের আগেই পৃথিবীতে চলে এসেছে যে শিশু, মায়ের পেট বের করে তাকে সেই ব্যাগে ঢোকানো হবে।" সেখানে সে চার সপ্তাহ সময় অবস্থান করবে। তারপর নতুন করে সে আরেকবার ভূমিষ্ঠ হবে পৃথিবীতে।" লিসা ম্যান্ডিমেকার কৃত্রিম মাতৃগর্ভের নকশা করছেন "এই মূহুর্তে পাঁচটি বড় বড় বেলুন বানানো হয়েছে, প্রত্যেকটির সঙ্গে জুড়ে দেয়া হয়েছে অসংখ্য পাইপ। এই বেলুনগুলোর মধ্যে শিশুরা মাতৃগর্ভে যে তরলের মধ্যে সাঁতার কাটে, তার ব্যবস্থা করা হবে। "আর বিভিন্ন পাইপের মাধ্যমে সেখানে তরল ও রক্ত সঞ্চালনের ব্যবস্থা করা হবে।" লিসা বলছেন, প্রতিটি বেলুন তৈরি করা হবে একটি শিশু মাতৃগর্ভে সর্বশেষ যে ওজনে রয়েছে, তার দ্বিগুণ আকৃতিতে, যাতে শিশুটির চলাফেরা মাতৃগর্ভের মতই স্বাভাবিক থাকে। এই ল্যাবের গাইনি চিকিৎসক গিড ওয়েই, ২৭ বছর যাবত এই পেশায় আছেন। তিনিও এই গবেষণা দলে রয়েছেন। কর্মজীবনে তিনি বহু নবজাতকের মৃত্যু প্রত্যক্ষ করেছেন, বহু মা-বাবার আক্ষেপ আর হতাশাও দেখেছেন। আরো পড়তে পারেন: অভিজিৎ ব্যানার্জির নোবেল নিয়ে বাঙালির যত তর্ক প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে সন্তান হত্যা কী করে সম্ভব? তিনি বলছেন, কৃত্রিম মাতৃগর্ভের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটা তরলে পূর্ণ থাকবে, যেখানে একটি ইনকিউবেটর থাকে বাতাসে পূর্ণ। "এখন অপরিণত অবস্থায় জন্মানো শিশুকে ইনকিউবেটরে রাখা হয়, যা আসলে ঐ শিশুটির জন্য একটি বৈরি অবস্থা, কারণ ইনকিউবেটরের বাতাস শিশুর ফুসফুসের ক্ষতি করে। তার বদলে এখন অপরিণত শিশু যারা খুব ছোট্ট আকৃতিতে থাকে, তাদের কৃত্রিম মাতৃগর্ভে ঢুকিয়ে দেয়া হবে।" "সেখানে তাৎক্ষণিকভাবে শিশুটিকে কৃত্রিম প্লাসেন্টা বা নাড়ি দিয়ে সংযুক্ত করা হবে, ফলে সে থাকবে প্রয়োজনীয় পরিমাণ তরলের ভেতর ঠিক যেভাবে সে ছিল তার মায়ের গর্ভে। "ঐ গর্ভে পানি এবং সব ধরণের খনিজ উপাদান পরিমাণ মত থাকবে। ফলে আম্বিলিকাল কর্ডের মাধ্যমে শিশু প্রয়োজনীয় পরিমাণ অক্সিজেন এবং অন্য পুষ্টি উপাদান পেতে থাকবে।" ওই অবস্থায় চার সপ্তাহ থাকার পরে, শিশুটিকে বের করা হবে। নতুন করে ভূমিষ্ঠ হবে সে। আর এভাবেই বাঁচানো যাবে লক্ষ প্রাণ। অনেক মা-বাবার কাছে এটা একটা স্বপ্ন সত্যি হবার মত ব্যপার। কারণ এখনো প্রতিবছর বিশ্বে দেড় কোটির বেশি শিশু অপরিণত অবস্থায় জন্ম নেয়, যার অর্ধেকের বেশি শিশু মারা যায়। লিসা বলছেন, এই পুরো প্রক্রিয়া সম্পর্কে এখুনি মানুষ ভাবতে পারছে না হয়ত, কিন্তু এর মাধ্যমে হয়ত বাঁচানো যাবে অসংখ্য শিশুর জীবন। নৈতিক প্রশ্ন? গর্ভধারণ সম্পর্কেও মানুষ একেবারে ভিন্ন ভাবে ভাবতে পারবেই কৃত্রিম মাতৃগর্ভ আবিষ্কারের ফলে, বলছেন লিসা। কিন্তু প্রাকৃতিক উপায়ে গর��ভধারণ জায়গায় কৃত্রিম পদ্ধতি কতটা নৈতিক হবে - তা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। সমালোচকেরা মনে করেন, এর ফলে আগামী দিনে নারীরা সন্তান ধারণকালীন জটিলতা এড়ানোর জন্য প্রাকৃতিকভাবে গর্ভধারণে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন। নেদারল্যান্ডসের একদল বিজ্ঞানী বলছেন, আগামী এক দশকের মধ্যে তারা কৃত্রিম মাতৃগর্ভ তৈরি করতে সক্ষম হবেন। +text: ফেলে যাওয়া লক্ষ লক্ষ লাইফ জ্যাকেট দিয়ে বানানো হচ্ছে নানা সামগ্রী। স্তূপ হয়ে পড়ে থাকা এই লাইফ জ্যাকেট মনে করিয়ে দেয় তাদের কষ্টের কথা। গ্রীসের সৈকত থেকে সেগুলো জড়ো করে সেলাই করে বানানো হচ্ছে নানা সামগ্রী। আর সেগুলো বানাচ্ছেন শরণার্থীরা নিজেরাই। সেলাই মেশিন আর সিরিয়ান ভাষা এই দুইয়ে মিলে জমজমাট একটি কমিউনিটি সেন্টারে গিয়ে দেখা গেলো সেখানে বহু সিরিয়ান সেলাই মেশিন আর কাচি নিয়ে ব্যস্ত। এখানে এই শব্দ আর লাইফভেস্টগুলোর সাথে মিশে আছে সেই শরণার্থীদের গল্প যারা যুদ্ধের হাত থেকে পালিয়ে বেচেছেন। যারা পালিয়ে আসতে গিয়ে সমুদ্রে প্রাণ হারিয়েছেন রয়েছে তাদের গল্পও। কিন্তু একই সাথে শরণার্থীরা এখানে সেলাই মেশিনে বুনে চলেছেন নতুন জীবনের গল্প। হমস শহরের শিক্ষক এলহাম শাহীন তাদের একজন। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: 'মাদক ব্যবসার চেয়ে ক্রসফায়ারে হত্যা বড় অপরাধ' 'বিমানে সবাই কান্নাকাটি এবং দোয়া পড়তে থাকেন' বাং সমুদ্র পথে ঝুঁকি নিয়ে আসছেন তারা। তিনি বলছেন, "আমি স্বেচ্ছা সেবকের কাজ পছন্দ করি। সিরিয়া থাকতে আমি নিয়মিত এরকম কাজ করতাম। কিন্তু এখানে আমি কিছু টাকা পাচ্ছি। প্রতি মাসে দেড়শ ইউরো পাই। তাতে কিছুটা উপকার হচ্ছে" উজ্জ্বল কমলা রঙের লাইফ জ্যাকেটের কাপড় দিয়ে ব্যাজ বানাচ্ছিলেন শাহীন। যার কাজ হল শরণার্থীদের সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি। তিনি বলছেন, "লাইফভেস্ট সম্পর্কে আমরা ধারনা বদলাতে চাইছি। এটি শুধু বিপদের কথা বলে। এখন এগুলো দিয়ে আমরা সচেতনতা বৃদ্ধি করবো। এগুলো এখন আমাদের জীবনের গতি পরিবর্তনে সহায়তা করবে" নেদারল্যান্ডস এর সংস্থা মেকারস ইউনাইট সেই সুযোগ করে দিচ্ছে শরণার্থীদের। তাদের স্বেচ্ছাসেবকেরা গ্রীসের দ্বীপগুলোর সৈকত থেকে শরণার্থীদের ফেলে যাওয়া লাইফ জ্যাকেট সংগ্রহ করছেন। তার পর সেগুলো কেটে সেলাই করে নানা পণ্য তৈরি করা হচ্ছে। যেমন ধরুন ল্যাপটপ কাভার, কাগজপত্র রাখার ফাইল, হ��যান্ড ব্যাগ, শরণার্থীদের সম্পর্কে সচেতনতা মূলক ব্যাজ, রিষ্ট ব্যান্ড বা পতাকা। মেকারস ইউনাইট এর প্রতিষ্ঠাতা টমি স্ফাইশলার। সমুদ্রে মৃত শরণার্থীদের স্মরণে। তিনি বলছেন তারা ইউরোপের সবচাইতে দীর্ঘতম অভিবাসী সংকট নিয়ে কথা বলার সুযোগ সৃষ্টি করতে চান। তিনি বলছেন, "আমাদের জন্য এই লাইফভেস্টগুলো হচ্ছে একটি আলোচনার শুরু। আমরা চাই এই পণ্যগুলো সমাজে একটা আলোচনা তৈরি করুক। এই যে এত শরণার্থীরা আসছেন তাদের সমাজে যায়গা করে দিতে আমরা কি করতে পারি? আমরা কি সমস্যা লুকিয়ে রাখবো? নাকি সেনিয়ে কিছু করবো? আমরা এভাবে আলাপটা শুরু করছি। আমরা তাদের জন্য জীবিকার সুযোগ তৈরি করে দিয়ে তাদের জন্য কিছু একটা করছি" এই কাজের মাধ্যমে জীবনে দ্বিতীয়বার সুযোগ পেয়েছেন সিরিয়ার আলেপ্পোর বাসিন্দা আমার হাজ ওমার। যিনি পেশায় একজন দর্জি ছিলেন। "আমি এখানে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ অনুভব করছি। আমি সিরিয়াতে যখন কাজ করতাম এখানেও সেই একই কাজ করছি। আমি সুখী" এখানেও তার গলায় ঝোলানো আছে মাপ দেয়ার টেপ। যুদ্ধের হাত থেকে সমুদ্র পথে পালিয়ে আসার সময় যে লাইফ জ্যাকেট তার জীবন বাঁচিয়েছে, আজ সেই কমলা রঙের লাইফ জ্যাকেটটি তার জন্য আয়ের সুযোগ ও করে দিচ্ছে। যুদ্ধ থেকে পালিয়ে সমুদ্র পথে যে সব শরণার্থী ইউরোপে ঢুকছেন তারা সৈকতে ফেলে যাচ্ছেন লক্ষ লক্ষ লাইফ জ্যাকেট। +text: 'চিকিৎসার বেহালদশায় মানুষ হাসপাতাল বিমূখ হয়েছে।' স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৪৫ জন কর্মকর্তার সমন্বয়ে মনিটরিং কমিটি পুনর্গঠন করেছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, চিকিৎসা না পাওয়া এবং ভোগান্তির কারণে মানুষ হাসপাতাল বিমুখ হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে অনেক বিলম্বে মনিটরিংয়ের দিকে নজর দেয়া হচ্ছে। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম দিকে মানুষ হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরেও চিকিৎসা পায়নি। এর পরীক্ষাও ছিল একেবারে সীমিত পর্যায়ে। পরে ধীরে ধীরে এই রোগের পরীক্ষা এবং চিকিৎসার জন্য সরকারি বেসরকারি হাসপাতালের সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু এরপরও হাসপাতালে গিয়ে যথাযথ চিকিৎসা না পাওয়া এবং দুর্ভোগ ও অব্যবস্থাপনার নানা অভিযোগ ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সারাদেশে সরকারি বেসরকারি সব হাসপাতালের জন্য মনিটরিং কমিটি পুনগর্ঠন করেছে। পঁয়তাল্লিশ জন কর্মকর্তার এই কমিটির প্রত্যেক সদস্যকে প্রতিমাসে অন্তত একটি হাসপাতাল পরিদর্শন করতে হবে এবং সমস্যা চিহ্নিত করে রিপোর্ট দিতে হবে মন্ত্রণালয়কে। সরকার সারাদেশে হাসপাতালগুলোতে মনিটরিং জোরদার করার কথা বলেছে। আরও পড়তে পারেন: 'পেছনের রুই-কাতলাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ফল হবে না' রিজেন্ট হাসপাতালের অনিয়ম কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে গেল কীভাবে? রিজেন্ট হাসপাতালের মালিককে নিয়ে কতটা বিব্রত আওয়ামী লীগ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও সারাদেশে হাসপাতালগুলোতে আকস্মিক পরিদর্শন শুরু করার কথা জানিয়েছে। অধিদপ্তরের মুখপাত্র ড: আয়শা আকতার বলেছেন, হাসপাতালগুলোতে যাতে অব্যবস্থাপনা না থাকে, সেজন্য মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। "আকস্মিক পরিদর্শনে হাসপাতালের পুরো ব্যবস্থাপনা দেখা হবে। বিভিন্ন হাসপাতাল লাইসেন্স ছাড়া চালাচ্ছে-এই বিষয়ের সাথে হাসপাতালে চিকিৎসার সব বিষয়গুলোই দেখবে পরিদর্শক দল। বিভিন্ন অভিযোগ যে আসছে, সে ব্যাপারে াভিযানতো চলছেই। অভিযোগ ছাড়াও হাসপাতালে আকস্মিক পরিদর্শনে সমস্যা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।" বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, করোনাভাইরাসের পরীক্ষা থেকে শুরু করে চিকিৎসা-প্রতিটি ক্ষেত্রেই চরম অব্যবস্থাপনার নানান অভিযোগ যখন ওঠে, তখন জেকেজি এবং রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারণা ধরার পরার পর মানুষের মাঝে চিকিৎসা নিয়ে অনাস্থা আরও বেড়ে গেছে। আর এই অনাস্থা থেকে মানুষ হাসপাতাল বিমুখ হয়েছে বলে তারা মনে করেন। সরকারি হিসাবে সারাদেশে হাসপাতালগুলোতে করোনাভাইরাসের রোগী জন্য নির্ধারিত প্রায় ১৫০০০ শয্যার মধ্যে ৭০ শতাংশের বেশি শয্যা খালি রয়েছে রোগীর অভাবে। করোনাভাইরাসের চিকিৎসার নিধারিত হাসপাতালগুলোতে ৭০শতাংশের বেশি ময্যা খালি রয়েছে রোগীর অভাবে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা: লেলিন চৌধুরী বলছিলেন, অনেক দেরিতে হলেও এখন যে হাসপাতাল মনিটরিংয়ে নজর দেয়া হচ্ছে, সেটা তিনি ইতিবাচক হিসাবেই দেখছেন। "অন্তত একটা মনিটরিং কমিটি হয়েছে। তারা হাসপাতালগুলো পরিদর্মন করবে। এই বিষয়টিকে আমি স্বাগত জানাই।অন্তত একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।" তিনি আরও বলেছেন, "কিন্তু হাসপাতালগুলোতে যেভাবে অব্যবস্থাপনা এবং মানুষের কাছে মিথ্যাচার করা হয়েছে, মানুষজন হাসপাতালের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলছে। এখন প্রত্যেকটা জায়গাতেই যেমন টেস্টের ভোগান্তি শূণ্যে নিয়ে আসা, হাসপা���ালের ব্যবস্থাপনায় উন্নতি, রোগীর সাথে মানবিক আচরণ, ঔষধ বাইরে থেকে যে কিনতে হচ্ছে, সেগুলোর সাপ্লাই দেয়াসহ পুরো বিষয়টা যদি আন্তরিকভাবে হ্যান্ডেল করা হয়, তাহলে মানুষের আস্থা আবার ধীরে ধীরে ফিরে আসবে।" আরেকজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা: মাহফুজা রিফাত মনে করেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের পাঁচ মাস চললেও এখনও চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত করা সম্ভব। "আমি মনে করি, ভাল কিছু শুরু করার জন্য যে কোন সময়ই যথেষ্ট। যদি এই মনিটরিং কমিটি ভাল কিছু করতে পারে, সেবার মানটাকে নিয়ে আসতে পারে, তাহলে ভাল হতে পারে।" তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেছেন,চিকিৎসা নিয়ে মানুষের আস্থার সংকট আছে বলে তারা মনে করেন না। তিনি বলেছেন, কিছু সমস্যা বা অভিযোগ আছে, সেগুলোই সমাধানের জন্য মনিটরিং জোরদার করাসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা তারা নিচ্ছেন। কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? বিশ্ব মহামারি শেষ হতে কতদিন লাগবে? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় করোনাভাইরাস নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন বাংলাদেশে করোনাভাইরাস চিকিৎসার ব্যবস্থাপনা নিয়ে নানা অভিযোগ ওঠার পর এখন সারাদেশে হাসপাতালগুলো মনিটরিং জোরদার করার কথা বলা হয়েছে। +text: রবার্ট ও তার লম্বা সাবেক প্রেমিকা ইংরেজ লেখক এ্যালান মট লিখেছেন, বেঁটে হবার অসুবিধাটা হলো, প্রতি ১০ জন মেয়ের মধ্যে ৮ জনই একজন বেঁটে পুরুষকে প্রথম দেখার সাথে সাথেই সম্ভাব্য যৌনসঙ্গীর তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেবে। তবে তার এই মন্তব্যের জবাবে পাঠকরা - তার মধ্যে দীর্ঘদেহী নারীও আছেন - তাদের নিজেদের অভিজ্ঞতা জানিয়ে চিঠি লেখেন, যার মধ্যে ভালো-মন্দ দুরকমই আছে। রবার্টের গল্প: উচ্চতা ৫ ফুট ১ ইঞ্চি "বেঁটে পুরুষরা প্রায়ই অভিযোগ করেন যে তাদের প্রেম করার জন্য মেয়ে পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায় - কিন্তু আমার কখনোই তা মনে হয় নি।" রবার্ট সুইডেনের লোক - যে দেশ দীর্ঘদেহী শ্বেতাঙ্গ পুরুষদের জন্য বিখ্যাত। কিন্তু রবার্ট বলেন, তার কখনোই মনে হয় নি যে অন্যদের পাশে তার খর্বাকৃতি খুব বেশি চোখে লাগছে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বিদায়ী স্পিকার জন বারকো এবং তার স্ত্রী স্যালি "আমার সাথে সব সময়ই অনেক লম্বা লোকদের বন্ধুত্ব হয়েছে, আমার বেশির ভাগ পুরুষ বন্ধুরাই ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি থেকে ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা। ফলে আমি লম্বা লোকদের পাশে কখনো অস্বস্তি বোধ করি নি।" "এটা ঠিক যে লোকে আমার উচ্চতা নিয়ে কথা বলেছে কিন্তু আমি মনে করি নি যে আমাকে কেউ অপমান করছে। আমি ছিলাম আমার ক্লাসের বেঁটে ছেলেটি। ব্যস, এটুকুই।" "কখনো কখনো লোকে আমাকে ওপরে তুলে ধরেছে, কারণ আমাকে ওঠানো সহজ, এরকম কিছু বিরক্তিকর ঘটনা অবশ্য ঘটেছে। আমার ছোটবেলায় উচ্চতা বাড়ানোর জন্য একবার হর্মোন ইঞ্জেকশন দেবার কথাও হয়েছিল।" কিন্তু মেয়েদের ক্ষেত্রে উচ্চতা কোন অসুবিধার কারণ হয় নি, বলছেন রবার্ট। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেয়ার উদ্যোগ আটকে গেছে মাঠে নামা ছাড়া আর কিছু ভাবছি না: সাকিব ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রে যা নেয়া যাবে না ইমরান খান বিরোধী বিক্ষোভে নারীরা নেই কেন? রড স্টুয়ার্ট ও পেনি ল্যাংকাস্টার "আমি সবসময়ই দেখেছি মেয়েদের সাথে বন্ধুত্ব করা আমার জন্য একটা সহজ ব্যাপার ছিল। এর জন্য আমার কোন চেষ্টা করতে হয়নি। কোন মেয়েকে ডেট করতে গেলে আমি কখনো উচ্চতার কথা ভাবিনি।" "আমি যে মেয়েদের সাথে ডেট করেছি, তার মধ্যে ৫ ফুট ১ ইঞ্চি অর্থাৎ আমার সমান উচ্চতার মেয়ে যেমন ছিল, তেমনি ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি লম্বা মেয়েও ছিল।" ক্রিসের গল্প, উচ্চতা ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি "অনেক মেয়েই ৬ ফুটের কম উচ্চতার পুরুষদের সাথে ডেট করতে চায় না" - বলছেন ক্রিস। তিনি একবার একটা পরীক্ষা চালিয়েছিলেন ডেটিং এ্যাপ ওকেকিউপিড-এ। এতে তার প্রোফাইলে তিনি প্রথমে লিখেছিলেন তার উচ্চতা ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি। ডেটিং সাইটে ক্রিসের প্রোফাইল "দেখা গেল মেয়েরা সাড়া দিচ্ছে খুবই কম, সপ্তাহে হয়তো মাত্র একজন। আমি তাদের সবাইকে মেসেজ পাঠালাম কিন্তু জবাব দিলো তাদের মাত্র ২০ শতাংশ।" "এর পর আমি আমার উচ্চতা পাল্টে লিখলাম ৬ ফুট ১ ইঞ্চি। আর তখন আমি তিন গুণ বেশি মেয়ের সাড়া পেতে লাগলাম। তাদের মেসেজ পাঠানোর পর সাড়া পেলাম অন্তত অর্ধেকের কাছ থেকে। লন্ডনের অনেক মেয়েই ৬ ফুটের কম লম্বা পুরুষের সাথে ডেট করতে চায় না।" এ্যাড্রিয়ান, উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি এ্যাড্রিয়ানের অভিজ্ঞতা আবার অন্য রকম। তিনি বলছেন, তার এক সাবেক প্রেমিকা খর্বাকৃতির পুরুষদের প্রতি আলাদা এক আকর্ষণ বোধ করতেন। এ্যাড্রিয়ান একজন ক্রীড়াবিদ, এবং ১৯৮৪ অলিম্পিকে রোইং-এ স্বর্ণপদক জিতেছিলেন। অলিম্পিক পদক জয়ের পর সঙ্গীদের সাথে এ্যাড্রিয়ান (ডানে) তার এক সাবেক প্রেমিকার উচ্চতা ছিল ৬ ফুট, কিন্তু তার দীর্ঘকায় পিতার সাথে তার সম্পর্ক খারাপ ছিল বলেই সম্ভবত: তিনি বেঁটে পুরুষদের কাছে নিরাপদ বোধ করতেন, বলছেন এ্যাড্রিয়ান - হয়তো অন্য লোকজনের প্রতিক্রিয়া দেখে তিনি মজাও পেতেন। "তবে আমি কিন্তু লোকের চোরা চাহনি আর ফিসফাসকে একটা প্রশংসা হিসেবেই নিতাম, কারণ লোকে নিশ্চয়ই ভাবতো যে আমার এমন কিছু একটা যা খুবই দারুণ।" "আমার প্রখম স্ত্রীর উচ্চতা ছিল আমার সমান। আমার দ্বিতীয় দীর্ঘমেয়াদি বান্ধবী ৬ ফুট। আর আমার দ্বিতীয় স্ত্রী আমার চেয়ে ১ ইঞ্চি বেশি লম্বা। এখন আমার কোন বান্ধবী নেই, তবে আগামী বান্ধবী যে-ই হবেন তার উচ্চতা নিয়ে আমার কোন চিন্তা নেই।" "এটা ঠিক যে উচ্চতার কারণে আমি অনেক মেয়ের কাছেই বেশ খারাপ ভাবে প্রত্যাখ্যাত হয়েছি, বিশেষ করে আধুনিক ইন্টারনেট ডেটিংএ। তবে আমার মত হলো আমার উচ্চতা সেই মেয়ের সমস্যা, আমার নিজের নয়।" সোফি ডাহল এবং তার খর্বাকৃতির স্বামী এ্যাড্রিয়ান বলছেন, তার কম উচ্চতায় চিন্তিত হয়ে তার বাবা-মাও তাকে ছোটবেলায় হরমোন ইঞ্জেকশন দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সে সময়টায় হরমোন ইঞ্জেকশনের কারণে একধরণের রোগের ভয় ছড়িয়েছিল তাই সেটা আর হয় নি। লম্বা মেয়ে ক্যারল, উচ্চতা ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি "আমি দেখেছি যে বেঁটে পুরুষরা লম্বা মেয়েদের একটা হুমকি হিসেবে দেখে, এবং আমার বুদ্ধিশুদ্ধি নেই এমন ভাব দেখিয়ে আমাকে ছোট করার চেষ্টা করে। হয়তো এর মাধ্যমে হয়তো তারা নিজেদের 'বড়' দেখাতে দেখাতে চায়।" ক্যারল বলছিলেন, খাটো পুরুষরা তাকে দেখে হাসতেন, এবং জিজ্ঞেস করতেন এত ওপরের বাতাস বেশি হালকা কিনা। "আমি ছিলাম লিকলিকে, তাই আরো বেশি লম্বা দেখাতো। আমাকে বলা হতো, আমার ছেলেবন্ধু পেতে অসুবিধা হবে। আমি দেখতাম বেঁটে পুরুষরা উদ্ধত এবং তারা সবসময়ই যেন কিছু একটা প্রমাণ করতে চায়। এখন অবশ্য লম্বা মেয়ে অনেক বেশি দেখা যায় এবং এতে আমার আত্মবিশ্বাসের ওপরও প্রভাব পড়েছে।" "আমার বেঁটে লোকদের সাথে বন্ধুত্ব হয়েছে, তবে প্রায়ই আমার মনে হতো তারা আমাকে একটা ট্রফি হিসেবে দেখে এবং আমাকে জয় করতে চায়, যেন আমি একটা পর্বত!" "আমাকে হিলছাড়া জুতো পরতে বলা হতো। অনেকে বলতো, আমি যেন বারে না দাঁড়িয়ে বরং বসি।" নেপোলিয়ন ছিলেন ৫ ফুট ২ ইঞ্চি লম্বা, তবে তখন ফ্রান্সে ১৩ ইঞ্চিতে ১ ফুট মাপা হতো আমার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর উচ্চতা মাত্র ৪ ফুট ১১ ইঞ্চি। তাই বেঁটে মানুষদের ব্যাপারে আমার কোন খারাপ ধারণা নেই। আমার বান্ধবী ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি লম্বা একজন পুরুষকে বিয়ে করেছে। আমি নিজে বিয়ে করেছি ৬ ফুট উচ্চতার পুরুষকে। তবে আমি এখনো হাই হিল পরি এবং আমার উচ্চতা নিয়ে গর্ব বোধ করি। অতীতে বেঁটে পুরুষদের আচরণের জন্য আমার উচ্চতা নিয়ে হীনমন্যতার বোধ তৈরি হয়েছিল । তবে এখন আমি জানি যে তারা নিরাপত্তাহীন বোধ করতো বলেই এমন করতো। জরিপ কী বলে? নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের দু'জন সমাজবিজ্ঞানী ২০১৪ সালে এক জরিপ চালান, যার পর দীর্ঘ এক রিপোর্টে তারা বলেন, বেঁটে মানুষদের বিয়ে দীর্ঘস্থায়ী এবং স্থিতিশীল হয়। এতে বলা হয়, বেঁটে পুরুষরা প্রায়ই তাদের চাইতে কম উচ্চতার নারীদেরই বিয়ে করে থাকে। তবে কখনো কখনো তাদের চেয়ে বেশি উচ্চতার নারীদেরও বিয়ে করে। খর্বাকৃতির পুরুষরা প্রায়ই বেশি বয়েসে বিয়ে করে তবে তাদের বিবাহিত জীবন প্রায়ই দীর্ঘ এবং সুখের হয়। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: বেঁটে হওয়ার যত সুবিধা এবং অসুবিধা কী ধরণের পুরুষ পছন্দ বাংলাদেশের মেয়েদের? বেঁটে মানুষদের ফুটবলার হয়ে ওঠার লড়াই 'আমি তো বলিনি যে কিম জং আন 'বেঁটে আর মোটা' একজন বেঁটে পুরুষ তার কম উচ্চতার জন্য যৌনজীবনে কী কী অসুবিধার মুখে পড়তে পারে? +text: শামীমা বেগম যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশে বসবাসরত সিলেটিদের অনেকেই চিন্তা করছেন, তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নাগরিকত্বও এর মধ্যে দিয়ে হুমকির মুখে পড়লো কিনা। প্রায় ৫০ বছর যাবৎ লন্ডনে বসবাসরত মহিব চৌধুরী জানালেন, এ ঘটনা লন্ডনে বাঙালী কমিউনিটিতে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। তার ভাষায় শামীমার নাগরিকত্ব বাতিলের বিষয়টি এখন কমিউনিটির ভেতরকার আলোচনায় 'হট টপিক।' "এটা এক বড় উদ্বেগের বিষয়। বিশেষ করে আমরা পিতা-মাতারা বেশি উদ্বিগ্ন। তাদের সন্তানরাও এটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে যে এরকম একটা ঘটনা ঘটে গেল, তার তো বিচার হতে পারতো ! কিন্তু তার নাগরিকত্বই বাতিল হয়ে গেল! ইটস টু মাচ।" লন্ডনের বাসিন্দা মহিব চৌধুরী বলছেন, বাঙালী কমিউনিটিতে এখন গভীর উদ্বেগ বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: ‘আইএস বধূ’ শামীমা বেগমকে নিয়ে কেন এতো হ���চই? সিরিয়াতে কেমন ছিল আই এস দম্পতির জীবন ব্রিটিশ নাগরিকত্ব হারাচ্ছেন 'আইএস বধূ' শামীমা বেগম শামীমার ‘অন্যায়ের’ জন্য ক্ষমা চাইলেন তার বাবা লন্ডন প্রবাসী আরেকজন মাদানিয়া মনোয়ারা। তিনি বলেন, শামীমার সিরিয়া যাবার ঘটনার পর থেকেই লন্ডনে বাঙালী কমিউনিটিতে বাড়তি সতর্কতা দেখা দিয়েছে। আগে তাদের উদ্বেগের বিষয় ছিল মাদক বা বুলিং - এগুলো । কিন্তু শামীমার পর উগ্রবাদ এবং এখন নাগরিকত্ব বাতিল নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। "অনেকেই সব সময় একটা আতঙ্কে থাকে। বাচ্চারা স্কুলে যাচ্ছে, কী করতেছে, কার সাথে মিশতেছে? এখন অনেকেই... যেমন আমার ভাই তার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে যাচ্ছে, আবার সাথে করে নিয়ে আসে। ও বলছিল যে, প্রয়োজন হলে কাজে মিস দিব - কিন্তু আমার বাচ্চাদের নিরাপত্তা দেখতে হবে, যাতে তারা কোনো অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে।" লন্ডন প্রবাসী মাদানিয়া মনোয়ারা: শামীমার ঘটনার পর বাঙালী কমিউনিটিতে বাড়তি সতর্কতা দেখা দিয়েছে সিলেট অঞ্চলের বহু পরিবারের আত্মীয় স্বজন যেহেতু ব্রিটেন প্রবাসী - তাই এই উদ্বেগ ছুঁয়ে গেছে বাংলাদেশে থাকা সিলেটিদের মধ্যেও। সিলেটের বাসিন্দা আছিয়া খানম শিকদারের ছেলে মেয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করে লন্ডনে। নাতিনাতনিরাও জন্মসূত্রে ব্রিটিশ নাগরিক এবং সেখানেই বড় হয়েছেন। শামীমার সিরিয়া যাওয়া এবং সম্প্রতি নাগরিকত্ব হারানোর ঘটনা ছুঁয়ে গেছে তার পরিবারকেও। ব্রিটেনে জন্ম নেয়া তরুণরা কিভাবে কট্টরপন্থী হচ্ছে - সেটিও ভাবাচ্ছে তাকে। আছিয়া খানম শিকদারের ছেলে মেয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করে লন্ডনে "আমরাতো চিন্তা করবোই। হয়তোবা কাল আমার নাতিওতো এই পথ নিতে পারে! আমার ছেলেকেও বলতেছি, মেয়েকেও বলতেছি - ধর্ম শিক্ষা দিবা কিন্তু প্রপার" - বলেন মিজ শিকদার। সিলেটের আরেক বাসিন্দা সেলিম আউয়ালের পরিবারের আত্মীয়স্বজনদের অনেকেই আছেন লন্ডনে। নিজের মেয়েকেও ব্রিটেনে পাঠানোর পরিকল্পনা আছে তার। শামীমার ঘটনা নিয়ে বাড়তি কোন উৎকণ্ঠা না দেখালেও আত্মীয় স্বজনদের সতর্ক হওয়ার বিষয়টি পরিবারের সবাই বলছেন। পূর্ব লন্ডন থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় যাবার সময় বিমান বন্দরের সিসিটিভি ক্যামেরায় শামীমা বেগম ও তার দুই সঙ্গী "যা দেখছি, এটাতো উদ্বেগের ব্যাপার। আমার মনে হয় যে একটু যদি সচেতন থাকা যায়... এটা কিন্তু স্বীকার করতে হবে যে ইসলামের প্রকৃত শিক্��া যদি দেয়া সম্ভব হয়, ইসলামের যে মূল সৌন্দর্য্য, মানবিকতা তাহলে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই" - বলছেন সেলিম আউয়াল। একই বাড়ীর সদস্য ডলি শিকদার বলেন, তার পরিবারের আত্মীয় স্বজন অনেকেই লন্ডনে থাকেন। স্কুল থেকে শামীমা যখন সিরিয়া যায় তখন থেকেই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। "ছোট সন্তানরা স্কুলে যাচ্ছে, কীভাবে যাচ্ছে কার সাথে মিশতেছে এটা যদি ভাল করে অভিভাবকরা লক্ষ্য না করে তাহলে এরকম আরো হবে। যেহেতু নতুন শুরু হইছে জিনিসটা" - বলেন তিনি। ডলি শিকদার বলছেন, সন্তানদের ওপর লক্ষ্য রাখতে হবে অভিভাবকদের যেহেতু সিলেটিদের মধ্যে অনেকেই চান তাদের সন্তান যুক্তরাজ্যে স্থায়ী হোক। ডলি শিকদারও স্বপ্ন দেখেন তাদের ছোট সন্তান একদিন যুক্তরাজ্য যাবে। কিন্তু শামীমার নামের সঙ্গে যেহেতু বাংলাদেশ জড়িয়ে গেছে - সেটি নিয়ে নানা ভাবনার কথা জানালেন তিনি। আইএসের খেলাফত এখন পতনের মুখে "কিছু হলেই বাংলাদেশকে টার্গেট করে। গরীব দেশ, মুসলমান দেশ। এখন যেটা শুরু, ভবিষ্যতে ভিসা দেবে কিনা। আরো জটিল করবে কিনা?" - দুশ্চিন্তার কথা জানালেন ডলি শিকদার। সিলেটিদের সঙ্গে কথা বলে একটি বিষয় স্পষ্ট যে শামীমার নাগরিকত্ব বাতিল নিয়ে তারা যতটা না উদ্বিগ্ন - তার চেয়েও বেশি চিন্তিত কেন এবং কিভাবে উন্নত দেশে জন্মানো ও বেড়ে ওঠা এখনকার প্রজন্ম উগ্রতার দিকে ঝুঁকছে - সেটি নিয়ে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: মার্কিন সৈন্যরা 'মোটা', চীনারা 'হস্তমৈথুনে আসক্ত' বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স: নতুন প্রযুক্তিই কি দুর্ঘটনার কারণ? ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিভ্রাটে ফেসবুক, যা জানা যাচ্ছে কেন দশদিন ধরে 'ডাউন' বিজেপির ওয়েবসাইট? সিরিয়ায় পালানো 'আইএস-বধূ' শামীমা বেগমের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, যুক্তরাজ্যে সিলেটিদের মধ্যে তা নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে। +text: পাবর্ত্য চট্টগ্রাম, সবসময় স্পর্শকাতর এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এরপর রাতে আরো একজন মারা গেছেন বলে জানা যাচ্ছে। রাঙ্গামাটির পুলিশ সুপার মোঃ আলমগীর কবির সন্ধ্যায় বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছিলেন যে ভোট শেষ করে ফেরার পথে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে আহত কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, ফলে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। "আরো কয়েকজন গুরুতর আহত রয়েছে। তাই নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে।" রাত বারোটার পরে রাঙ্গামা���ির সাংবাদিক সুনীল কান্তি দে জানিয়েছেন, গুরুতর আহত আরো এক ব্যক্তি মারা গেছেন। এর আগে সদর থানার পুলিশ বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে দু'জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং একজন নারী রয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দুজনের নাম জানা গেছে। এরা হলেন - বদিউল আলম ও আমিন মাস্টার। ঘটনার বিবরণ যা জানা যাচ্ছে বাঘাইছড়ি উপজেলার নির্বাচনে বাঘাইরহাট ও মাচালং ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন শেষে সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাঘাইছড়ি ফিরছিলেন ওই দুটি কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তা, আনসার ও পুলিশ সদস্যরা। তাদের বহনকারী দুটি গাড়ি দীঘিনালা বাঘাইছড়ি সড়কের নয় কিলোমিটার এলাকায় পৌঁছানোর পর পাশের পাহাড় থেকে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা 'ব্রাশফায়ার' করে। ফলে ঘটনাস্থলেই কয়েকজন নিহত ও অন্যরা গুরুতর আহত হন। পুলিশ সুপার আলমগীর কবির জানান, ঐ ঘটনায় ২৭ জন আহত হয়েছেন। তাদেরকে বিজিবির হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কারা এই হামলা চালিয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়। আলমগীর কবির জানিয়েছেন, জায়গাটি অত্যন্ত দুর্গম। ঘটনার পরে সেখানে টহল বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া আহতদের একটি অংশকে রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিক সুনীল কান্তি বড়ুয়া। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: পার্বত্য চট্টগ্রাম: আঞ্চলিক রাজনীতির জটিল সমীকরণ পাহাড়িদের দলগুলো বিভক্ত হয়ে পড়ছে কেন পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তির পেছনে যে ৭টি কারণ পাহাড়ি নেতার শেষকৃত্যে আসার সময় গুলি, নিহত ৫ বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন জেলা পুলিশ সুপার। +text: জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন। জামায়াতে ইসলামী এর আগে স্বতন্ত্র প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের কথা বললেও, বুধবার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার কথা জানায়। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কয়েকজন নেতা অনানুষ্ঠানিকভাবে তাদের অস্বস্তির কথা জানালেও তারা এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না। তবে বিএনপি বলছে, চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ছাড়া জামায়াতের অন্য নেতাদের ধানের শীষ প্রতীক দেয়ায় তারা কোন সমস্যা দেখছে না। বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষের প্রত্যয়ন পত্র নিয়ে ২৫টি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জামায���াত নেতারা। দলটির আরও ডজন খানেক প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। কয়েক বছর আগে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হওয়ার পর তারা তাদের দলীয় প্রতীকও হারিয়েছে। তাদের দলীয়ভাবে নির্বাচন করারও কোন সুযোগ নেই। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান বলছিলেন, ধানের শীষ প্রতীকে তাদের নির্বাচন করার বিষয়ে তারা বাস্তবতাকে বিবেচনায় নিয়েছেন। "যেহেতু আপাতত যেকোনভাবেই হোক, আমাদের নিবন্ধন বাতিল করে রাখা হয়েছে, সেকারণে আমরা দলের নামে এবং নির্দিষ্ট প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারছি না। তাই আপনি লক্ষ্য করবেন, জোটের সব দলই ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছে। প্রতীক বড় নয়, বরং আমাদের ঐক্যটা বড়। এটাকে সম্মান করেই আমরা ধানের শীষ প্রতীক নিয়েছি।" নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ। এবার নির্বাচনে ধানের শীষের ওপর ভর করা ছাড়া জামায়াতে ইসলামীর কোন উপায় নেই বলে বিশ্লেষকদেরও অনেকে মনে করছেন। তারা বলছেন,বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিচার এবং ফাঁসি কার্যকর হওয়া ও আওয়ামী লীগ সরকারের চাপ- এসবের প্রেক্ষাপটে দলটি একটি প্রতিকুল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ফলে জামায়াতে ইসলামী তাদের অস্তিত্বের স্বার্থে পদক্ষেপ নিয়েছে বলেই বিশ্লেষকরা উল্লেখ করছেন। কিন্তু প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে বিএনপিকে। যদিও ইতিমধ্যেই বিএনপি ব্যাখ্যা দিয়েছে যে, তারা কোন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীকে ধানের শীষে মনোনয়ন দেয়নি। এছাড়া নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় জামায়াতে ইসলামী নামের কোন দল এখন নেই, এমন যুক্তিও দিয়েছেন বিএনপি নেতারা। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছিলেন, জামায়াত নেতাদের ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করার বিষয়কে তারা ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন। "তাদের দলীয় প্রতীক নেই বা সেটাকে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে না, সেখানে ধানের শীষের প্রতীক তারা মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছে। সেদিক থেকে অবশ্যই নেগেটিভ কিছু দেখছি না আমি।" "ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের সাথে প্রাথমিকভাবে কথাও বলেছি, যতক্ষণ পর্যন্ত জামায়াত নাম না থাকবে কিম্বা তাদের মার্কা না থাকবে, তাতে তারা খুব একটা আপত্তি করেনি। যে যুক্তিতে আমরা ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছি, সেই যুক্তিতেই বলছি, জামায়াতে ইসলামী যেহেতু নিবন্ধিত দ�� নয়, সুতরাং এ বিষয় নিয়ে খুব বেশি কথা বলার অবকাশ নেই।" ঢাকায় বিএনপির অফিসের সামনে নেতা-কর্মীদের ভিড়। আরো পড়তে পারেন: বাংলাদেশে সংসদ সদস্য হলে কী সুবিধা পাওয়া যায়? বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর কী ধরণের সরঞ্জাম আছে? একদিনে ১০,০০০ হলে মুক্তি পাচ্ছে রজনীর ছবি ২.০ যদিও বিএনপির নেতারা বিষয়টিতে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরছেন, তাদের আরেক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে অস্বস্তি তৈরি হতে পারে, সে বিষয়টিও চিন্তায় রাখছেন বিএনপি নেতারা। ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা এবং গণফোরাম সভাপতি ড: কামাল হোসেনের সাথে কথা বলে মনে হয়েছে, বিষয়টা তাঁর জন্য অস্বস্তিকর হয়েছে। তিনি অবশ্য নির্বাচন করছেন না। তবে ঐক্যফ্রন্টের যেসব নেতা নির্বাচন করছেন, তারা বেশ সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। গণফোরামেরই কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ঢাকার একটি আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তিনি বলছিলেন,জামায়াতের ধানের শীষ ব্যবহারের বিষয়টি বিএনপির ইস্যু বলে তারা মনে করেন। "জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে অন্যতম শরিক হচ্ছে বিএনপি, ঐক্যফ্রন্টে জামায়াত নাই। এখন বিএনপির প্রতীক অন্য কারা ব্যবহার করবে, আমরা তো সেই সিদ্ধান্ত দিতে পারি না।" তবে ঐক্যফ্রন্টের শরিক অন্য দলগুলোর নেতাদের অনেকে অনানুষ্ঠানিকভাবে পরিস্থিতিটাকে বিব্রতকর বলে মনে করছেন। জামায়াতের নেতা মতিউর রহমান নিজামী, যুদ্ধাপরাধের দায়ে যার ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। এই জোটের শরিক নাগরিক ঐক্যের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না এবিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি। তবে নিবন্ধন না থাকায় জামায়াতে ইসলামী নামে কোন দল এখন নেই বলে বিএনপি নেতারা যে যুক্তি দিচ্ছেন,ঐক্যফ্রন্টের অনেক নেতার যুক্তিও একইরকম। ঐক্যফ্রন্টের আরেক শরিক কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতা আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বলছিলেন, "আসলে আমি জানি না, আপনি কোথা থেকে পেলেন জামায়াতকে। এখন দেশে কোন জামায়াত নেই। দেশের মানুষ যারা আছে, এদেশের নাগরিক, বয়স হলে তাদের যে কেউ নির্বাচন করতে পারে।" "তারপরও যদি বলেন, আমি আপনার সাথে একমত হবো যে, জামাত না থাকলেও জামাতীরা আছে। আমি যখন একটা ট্রেনে উঠবো, তখন সে ট্রেনে টিকেট করে যে কেউ উঠতে পারে। আমার কোন অধিকার নেই যে আমি সেই ট্রেনে তাঁকে নেবো কি নেবো না। রিজার্ভ ট্রেন হলে কিছুটা চেষ্টা করা যায়। কিন্তু যাত্রীবাহী ট্রেনে সেই চেষ্টা ক��ার কোন সুযোগ নেই।" যদিও ড: কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের সময় বিএনপির সাথে জামায়াতের সম্পর্ক এবং ২০ দলীয় জোট নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল, কিন্তু এখন জামায়াতসহ দুই জোটের সব দল ধানের শীষ প্রতীক নিলেও ভোটের হিসাব নিকাশ থেকে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা তাদের অস্বস্তি চেপে যাবেন বলেই বিশ্লেষকরা মনে করেন। বাংলাদেশে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক দল জামায়াতে ইসলামী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর এ নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আরেকটি নির্বাচনী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। +text: একটি বোমা-নিরোধক বাসে করে নিয়ে যাওয়া হয় খেলোয়াড়দের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে যাওয়ার পথে গুলি করা হলে দলের ছয়জন খেলোয়ার আহত হন। নিহত হন ছয়জন পুলিশ সদস্য এবং দুইজন সাধারণ মানুষ নিহত হন। এর পর থেকে পাকিস্তান বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক ম্যাচ দুবাইতে আয়োজন করছে। এর আগে ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ে এবং টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলো পাকিস্তানে খেলতে অস্বীকৃতি জানায়। শ্রীলংকার দল আজকে সেখানে একটি টি ২০ ম্যাচ খেলবে। তিনটি টি ২০ ম্যাচের শেষ খেলাটি হবে আজ। তবে দলের বেশ কয়েক জন খেলোয়াড় ইচ্ছাকৃত ভাবে পাকিস্তান সফর থেকে নিজেদের বিরত রেখেছেন। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা এদিকে এই ম্যাচকে ঘিরে পাকিস্তানে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কারণ বেশ কয়েক বছর ধরে পাকিস্তান চাচ্ছে তাদের দেশে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করতে। আজ রবিবার সকালে পাকিস্তান দল লাহোরে পৌছালে কঠোর নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে। খবরে জানা যাচ্ছে, শ্রীলংকা দলটি আবু ধাবি থেকে লাহোরে আল্লামা ইকবাল বিমানবন্দরে অবতরণ করার পর তাদেরকে হোটেল পর্যন্ত একটি বোমা-নিরোধক বাসে করে নিয়ে যাওয়া হয়। যে রাস্তা দিয়ে সফরকারী দলটির বাস যাবে সেই রুট পুরোটা ভারী অস্ত্রসহ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। একজন প্রেসিডেন্টের জন্য যে ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয় ঠিক তেমনটা নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা হয়েছে তাদের অবস্থান এবং চলাচলের জায়গা। রবিবারের ম্যাচটি সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড মরিয়া হয়ে আছে। কারণ ২০০৯ সালের হামলার পর তারা যে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করতে পারে সেই বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। আরো পড়ুন: চিয়ারলিডাররা কি সবাই নারী? গোর্খা আন্দোলনের প্রভাব দার্জিলিংয়ের চা শিল্পে নারীর দেহে এইচআইভি ছড়ানোই ছিল তাঁর কাজ ২০০৯ সালে পাকিস্তানে শ্রীলংকার জাতীয় ক্রিকেট দলের বহনকারী বাসের উপর হামলার পর দেশটি পাকিস্তানে যেকোন ম্যাচ খেলা থেকে বিরত ছিল। +text: রাতভর চেষ্টার পর সারাদিনও উদ্ধার অভিযানে ব্যস্ত সময় কাটে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের একরাতের অগ্নিকান্ডে ৭৮ জন নিহতের পরদিন কেমন ছিল? কেনা কাটা কিংবা খাওয়া দাওয়া, এর আগে চকবাজার বহুবার যাওয়া হলেও চুড়িহাট্টা জায়গাটার সঙ্গে সেভাবে পরিচয় নেই। বুধবার রাত থেকেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দেশজুড়ে পরিচিতি পাওয়া এই জায়গাটি কোথায়, মানুষজনকে তা জিজ্ঞেস করতেই আগ্রহ নিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছিল, যেন বা কারো অপেক্ষায় পথ দেখাতে দাঁড়িয়ে তারা। তবে কথায় আছে না; কিছু পথই আপনাকে পথের দিশা দেয়! এরপর আর কাউকে জিজ্ঞেস করতে হল না, জনতার উৎকন্ঠিত মুখ আর দূর থেকে ভেসে আসা কোলাহলের শব্দ আমাদের উৎসের দিকে টেনে নিয়ে যায়। কিংবা এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার দিকে! একুশে ফেব্রুয়ারির চুড়িহাট্টা এখন আর চুড়িহাট্টা আগে থেকে চেনা বা না চেনায় কিছু যায় আসে না। কারণ এই একুশে ফেব্রুয়ারির চুড়িহাট্টা একটা মৃত্যুপুরী। প্রথম দেখায় মনে হবে যুদ্ধবিধ্বস্ত কোন পরিত্যক্ত এলাকা। আগুনে পুড়ে যাওয়া ওয়াহেদ ম্যানশন এখানকার প্রতিদিনের বাসিন্দা আব্দুল আজিজও তাই এই চুড়িহাট্টাকে চিনতে পারেন না। তার শূন্যদৃষ্টি এখনও যেন চোখের সামনে আগুন আর সবকিছু ছাই হয়ে যাওয়া দেখছে। আমাদের চোখের সামনে অবশ্য হাজী ওয়াহেদ ম্যানশনের ধ্বংসস্তুপ দাঁড়িয়ে। আগুনে পুড়ে কালো হয়ে যাওয়া চারতলার অবয়ব। ফায়ার সার্ভিসের দেয়া পানির ফোঁটা আর স্তিমিত হয়ে আসা ধোঁয়া দুটোই নজর কাড়ে। "শামসু চাচা তো গেছে গ্যা" মোট পাঁচটি রাস্তার মিলনকেন্দ্র এটি। শাহী মসজিদটার ঠিক সামনে রাস্তার এপার-ওপার দুটো গাড়ি, শুধু কাঠামোটা বলছে এটা গতরাতে আগুন লাগার আগ পর্যন্ত গাড়িই ছিল বটে। অগ্নিকান্ডে পুড়ে যাওয়া গাড়ির অবশিষ্ট অংশ অনেকগুলো রিক্সা, ভ্যান, ঠেলাগাড়ির কিছু অংশ যেগুলো দাহ্য নয়, সেগুলো টিকে থেকে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে এখনো। পোড়া মোটরসাইকেল আর পিকআপও চোখে পড়ে। দোকান কোনটা খোলা, কোনটার শাটার অর্ধেক বা পুরো বন্ধ। তবে অনুমান করতে অসুবিধা হয় না যে ভেতরে�� অবস্থা সবগুলোর একইরকম। আগুন নিভে যাবার পর প্রতিদিনের রুটি রুজির দোকান যেন হারিয়ে খুঁজছেন মালিক "এখানে একটা ফার্মেসি ছিল, দুজন আলেম ভেতরেই মারা গেছেন"-বলে ওঠেন একজন। কারো দাবি-এই হোটেলটাতেই মারা গেছে বেশি। হঠাতই কানে আসে একজন আরেকজনকে বলছে-শুনছস শামসু চাচা তো গেছে গ্যা! তার কাছেই বিস্তারিত বিবরণ মেলে। "এই ডেকোরেটর দোকানটা ওনার ছিল। বন্ধ করতেছিলেন। এসময় বিস্ফোরণ শুনে মনে করেন মারামারি লাগছে। সাথে সাথে শাটার নামায় দেন, ভেতরে আরেকটা ছেলে ছিল দুজনেই শ্যাষ।'' এই দোকানগুলো স্বরুপে ফিরলেও, এর মালিকরা এই দু:স্মৃতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন কি? কেমিক্যাল না সিলিন্ডার? পায়ের নিচে শর্ষেদানার মতো প্লাস্টিকের কাঁচামাল। ধবধবে সাদা প্লাস্টিকের গুঁড়ো কালো, পানি কালো, রং বেরংয়ের বিভিন্ন প্রসাধনী প্যাকেট ও পারফিউমের কৌটা সব পুড়ে কালো। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসায় উৎসুক মানুষের ভিড় বাড়ে। আর কোন পরিচিত স্বজনদের পাওয়ার আশা যখন শেষ তখন তর্ক শুরু হয় আগুনের সূত্রপাত নিয়ে। কারো দাবি ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণে আগুনের শুরু, কেউবা বলতে থাকেন গাড়ির সিলিন্ডার যত নষ্টের গোড়া। পুরান ঢাকার এই স্থায়ী বাসিন্দাদের মধ্যে তখন স্পষ্টত দুটি দল। একদল রাসায়নিক কারখানাকে কোনভাবেই দায়ী করতে রাজি নন। "কেমিক্যাল কি? এখানে তো বছরের পর বছর কেমিক্যাল কারখানা আছে, আপনারা গাড়ির সিলিন্ডারগুলো ঠিক করেন। এই যে নষ্ট সিলিন্ডার দিয়ে গাড়িগুলো চলতাছে কেউ খবর রাখে?"-তেড়ে আসেন ত্রিশোর্ধ্ব একজন। আরেকদল আবার যেকোন মূল্যে চান এই এলাকাগুলো থেকে রাসায়নিক কারখানা ও গুদামের অপসারণ। "আমাদের একটাই আর্জি এই রাসায়নিক কারখানাগুলো সরকার সব সরায়া নিক। আমাদের বাঁচান"-আর্তি জানাচ্ছিলেন এলাকার স্থায়ী পঞ্চাশোর্ধ্ব এক বাসিন্দা। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্লাস্টিক কাঁচামালের একাংশ জীবন না ব্যবসা? মসজিদের সামনে যে দুটো গাড়ি পুড়ে অঙ্গার, তার একটির মালিক মাহাবুবুর রহমান। প্রতিদিনের মতোই ঘরে ফিরছিলেন। "জ্যামে যখন আটকা তখন শুনি হঠাৎ একটা বিকট শব্দ, আর আগুনের উল্কাপিন্ডের মতো কিছু একটা গাড়িতে উড়ে এসে পড়ে ও আগুন ধরে যায়। আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। আমার পুরো গাড়িতে আগুন। দেখি আমার দরজাও খুলছে না। এসময় ড্রাইভার তার দরজা খুলে বের হয় ও আমাকে বলে ভাই তাড়াতাড়ি বের হন। এর���র কিভাবে আমি বের হইছি বলতে পারিনা।" প্রাণে বাঁচলেও এই আতঙ্ক যে তাকে অনেকদিন তাড়া করে ফিরবে তা বলাই বাহুল্য। তার কাছেই জানতে চাই, এ থেকে উত্তরণের কোন পথ কি আছে? "পুরান ঢাকা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। কিন্তু আমরা যদি একটু সচেতন হই তাহলে হয়তো এরকম বড় ঘটনা থেকে নিজেদের সেফ করা যাবে। কিন্তু জীবনটাকে তুচ্ছ করে যদি ব্যবসাটাকে প্রাধান্য দেই তাহলে এরকম ঘটনা বারবার ঘটবে। " আগুনের ভেতর থেকে বেঁচে ফেরা মাহাবুবুর রহমান হঠাৎ আবার বিস্ফোরণ ঘড়িতে বেলা চারটা বেজে গেছে। ঘাতক আগুনও নিয়ন্ত্রণে আসে, উদ্ধার অভিযান শেষের পথে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা শেষবারের মতো দেখে নিচ্ছেন চারদিক। এসময় হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ। ওয়াহেদ ম্যানশনের তিনতলার জানালা দিয়ে দেখা মেলে আগুনের লেলিহান শিখা। মূহুর্তের মধ্যে শুরু হয়ে উপস্থিত জনতার হুড়োহুড়ি, ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ব্যস্ততা। আগ্রহী জনতার চাপ সামাল দেয়াটা ছিল সারাদিন চ্যালেঞ্জ। রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়েও আটকানো যায়না মানুষের ঢল। এরপর আবারো বিস্ফোরণের শব্দ। স্থানীয়রা জানান দেন ওখানে কেমিক্যাল আছে সেগুলো থেকেই নতুন করে এই আগুন। আধাঘন্টার চেষ্টায় আবারো সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস। আবারো এসে ভিড় জমায় উৎসুক কৌতূহলী জনতা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবাইকে সরিয়ে দিতে গেলে একজন অনুরোধ করেন "ভাই আমাকে এখানে থাকতে দেন। আমার গাড়ি আছে।" পুলিশের ঐ কর্তা জানতে চান কোনটি। পুড়ে যাওয়া একটা গাড়ির দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করেন যুবক। পুলিশের তাতে মন গলে না। "আপনি কি ঐ গাড়ি এখন নিতে পারবেন? এখানে ভিড় করে লাভ কি।" নির্বাক যুবক তবু সরে না! এই কবুতরটিও কি তাঁর স্বজনকে খুঁজছে? সারা দিন ধরে নানা শ্রেণির-নানা পেশার মানুষ ভিড় করেছেন চকবাজারে। এই মর্মান্তিক দুঘটনা ছুঁয়ে গেছে তাঁদের প্রত্যেককেই। এদের অনেকেই নিমতলীর ঘটনারও স্বাক্ষী। এবার তাই একটা স্থায়ী সমাধান চান সবাই। ২০১০ এর নিমতলী থেকে ২০১৯ এর চকবাজার। পুরান ঢাকাতে যেন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। +text: এবারের বিশ্বকাপের সেরা গোলগুলোর একটি ছিল লুকা মদ্রিচের ৩২ বছর বয়সী মদ্রিচ এবারের বিশ্বকাপে ২ গোল করেছেন। গ্রুপপর্বে শতভাগ জয়ের রেকর্ড নিয়ে নক আউট রাউন্ডে উঠেছে তারা। শেষ ষোলোতে তাদের প্রতিপক্ষ ডেনমার্ক। রাকটিচ বলেন, নিজ নিজ পজিশনে স্পেনের আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা আর লুকা মদ্রিচ বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়। বার্সেলোনায় ইনিয়েস্তার সাথে একসাথে মিডফিল্ডে খেলেছেন রাকিটিচ। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল টটেনহাম হটস্পার্স থেকে ২০১২'তে রেয়াল মাদ্রিদে যোগ দিয়েছিলেন লুকা মদ্রিচ। গ্যালাক্টিকোদের হয়ে তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা ছাড়াও লা লিগা ও কোপা দেল রে শিরোপাও জিতেছেন তিনি। জাপানের দল ভিসেল কোবে'র হয়ে খেলতে গত মৌসুমে বার্সেলোনা ছেড়েছেন ইউরোপের ইতিহাসের সফলতমদের একজন ইনিয়েস্তা। মদ্রিচ ও ইনিয়েস্তা সম্পর্কে রাকিটিচ বলেন, "তাঁদের দু'জনকেই অন্য গ্রহের ফুটবলার মনে হয় যারা মানুষের সাথে খেলতে এসেছেন।" আরো পড়তে পারেন: শেষ হলো দুই মহারথীর বিশ্বকাপ বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে কারা নায়ক, কারা ভিলেন বিশ্বকাপ ২০১৮: কাভানির ইনজুরিতে 'চিন্তিত' উরুগুয়ে ক্রোয়েশিয়ার অনুশীলনে মদ্রিচ,রাকিটিচ ও মানজুকিচ "বার্সেলোনায় ইনিয়েস্তার সাথে গত চার বছর আর ক্রোয়েশিয়ায় মদ্রিচের সাথে ১১ বছর খেলতে পারা আমার জন্য দারুণ সম্মানের একটি বিষয়", বলেন রাকিটিচ। ক্রোয়েশিয়ার হয়ে ৪৯টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা রেয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার সাবেক খেলোয়াড় রবার্ট প্রসিনেচকি বলেছেন লুকা মদ্রিচ ক্রোয়েশিয়ার ইতিহাসের সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়। প্রসিনেচকির মন্তব্যের সাথে একমত পোষণ করেন রাকিটিচও। রাকিটিচ বলেন, "লুকা যে শুধু দেশের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় তাই নয়, নেতা ও মানুষ হিসেবেও তিনি অসাধারণ। আমরা তাঁকে অনুসরন করি। আমার ধারণা তাঁর ওপর আমাদের কতটা বিশ্বাস আছে তা সে বুঝতে পারে।" টটেহাম হটস্পার্সে মদ্রিচের জায়গা নেয়া ক্রিশ্চিয়ান এরিকসনের ডেনমার্কের বিপক্ষে রোববার মুখোমুখি হবে ক্রোয়েশিয়া। লুকা মদ্রিচকে 'ভিন্ন গ্রহের' খেলোয়াড় এবং ক্রোয়েশিয়ার ইতিহাসের সেরা ফুটবলার বললেন ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডার ইভান রাকিটিচ। +text: আতিয়া মহলের পূর্বপাশ স্মরনকালের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী এবং দীর্ঘতম সময় ধরে চলা জঙ্গি বিরোধী অভিযান শুরু হয়। বিরাট এই অভিযান সম্পর্কে শুধু টের পান আতিয়া মহলবাসী, সেখানে জঙ্গিরা অবস্থান করছিলেন তারা, আর আইনশৃঙ্খলা-বাহিনীর সদস্যরা। ঘটনার দিন শুক্রবার ভোরের দিকে প্রচণ্ড শব্দে ঘুম ভাঙ্গে আতিয়া মহলের ২য় তলায় থাকা বিশ্বজিত কুমার দে'র। শ্বাসরুদ্ধকর ৩০ ঘণ্টা আটকে থাকার পর বিবিসি বাংলার কাছে তিনি বর্ণনা করেন প্রথম তিনি কি দেখেছিলেন। "শুক্রবার সকালে বিশাল শব্দ হয়। ভয় পেয়ে নীচে নেমে আসি। কিন্তু দেখতে পাই কলাপসিবল গেটে তালা মারা, কিছু ব্যাগ আর তার রাখা। এইসব দেখে ভয় পেয়ে আমরা আবার সবাই উপরে চলে গিয়েছি। এরপর থেকেই আমরা ঘরের মধ্যে আটকা। আর্মির আসার আগ পর্যন্ত আমরা ঘরের মধ্যেই ছিলাম। প্রায় ৩০ ঘণ্টা সময় আমরা আটকে ছিলাম'। ২০১৬ সালে গুলশানের হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা-বাহিনী মরিয়া হয়ে পড়ে তাদের ভাষায় জঙ্গি বিরোধী অভিযানে। রাজধানী ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে চলতে থাকে এমন অভিযান। সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘসময় ধরে চলা এই অভিযানে নানা দিক দিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ। পুলিশ, র‍্যাব, সোয়াট বাহিনী সহ সিলেটের ওই বাড়ি ঘিরে 'অপারেশন টোয়াইলাইট' নামে অভিযানটি অব্যাহত সেনাবাহিনী। তবে কারো কোন ধারণা ছিল না কতদিন ধরে চলবে। অভিযানের ২য় দিনে অভাবনীয় এক ঘটনা ঘটে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের স্থানীয় সাংবাদিক আহমেদ নুর। যিনি নিজেও আহত হন। তিনি বলছিলেন "সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আতিয়া মহলের পার্শ্ববর্তী একটি ভবনে প্রেস ব্রিফিং করা হয়। প্রেস ব্রিফিং শেষে যখন আমরা ফিরে আসছিলাম তখন মূল সড়কের পাশে ঘটে এই বিস্ফোরণের ঘটনা। চারিদিকে মানুষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। আমি নিজেও আহত হয়ে সড়কের পাশে গড়িয়ে পরি"। পাঁচ দিন ধরে টানা অভিযান, থেমে থেমে গুলি, আইনশৃঙ্খলা-বাহিনীর সংবাদ ব্রিফিং, পাঁচতলা আতিয়া মহলের সব বাসিন্দাদের অভিনব কায়দায় অক্ষত অবস্থায় সরিয়ে নেয়া শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে দেশবাসী। এর পর মার্চ মাসেই আরো তিনটি স্থানে আইনশৃঙ্খলা-বাহিনী জঙ্গি-বিরোধী অভিযান চালায়। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও শালিস কেন্দ্র হিসেব অনুযায়ী ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ১০ অভিযান চালিয়েছে, যেসব অভিযানে নারী শিশু, পুরুষসহ ৩৫ জন নিহত হয়। পুলিশ অবশ্য নিহতদের মধ্যে ১৪ জন আত্মঘাতী হয়েছে বলে দাবি করেন। বছরের আরেক আলোচিত ঘটনা প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদত্যাগ। মূলত বিচারপতি সিনহা ও সরকারের সম্পর্কের টানাপড়েন শুরু হয় সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে। অসদাচরণ ও অযোগ্যতার কারণে সর্বোচ্চ আদালতের ব���চারকদের বরখাস্ত করার ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে দেওয়ার বিষয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত হাই কোর্টের রায় বহাল রেখে আপিল বিভাগ রায় দেয় জুলাই মাসে। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয় গত পয়লা আগস্ট। আদালতের রায়ের নয়দিন পর সরকারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়, যেটা নজিরবিহীন। রায়ে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য এবং পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সেই সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্টত প্রধান বিচারপতির উপর অসন্তোষ প্রকাশ পায়। সে টানাপড়েনের এক পর্যায়ে আইনমন্ত্রী বিবিসিকে জানান বিচারপতি এস কে সিনহা তাকে জানিয়েছেন যে তিনি ক্যান্সারের রোগী। এরপরই জানা যায় প্রধান বিচারপতি ছুটিতে যাচ্ছেন। বিচারপতি এস কে সিনহা লম্বা ছুটি নিয়ে প্রথমে অস্ট্রেলিয়া যান, সেখান থেকে যান সিঙ্গাপুরে। এরপর বিচারপতি এস কে সিনহা লম্বা ছুটি নিয়ে প্রথমে অস্ট্রেলিয়া যান, সেখান থেকে যান সিঙ্গাপুরে। কিন্তু দেশ ছাড়ার আগে সাংবাদিকদের হাতে দিয়ে যান কিছু লিখিত বক্তব্য যা সরকারের দেয়া বক্তব্যের সাথে পুরোটাই অসঙ্গতিপূর্ণ। সেইসাথে তিনি অসুস্থ নন বলেও জানান। বিচারপতি এস কে সিনহার ছুটি শেষ হয়ে যাওয়ার পর তিনি দেশে ফিরবেন কি-না, সে নিয়ে যখন আলোচনা তুঙ্গে তখন জানা গেল সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনে তাঁর পদত্যাগ পত্র জমা দেয়ার খবর। ১১ই নভেম্বর বঙ্গভবনের মুখপাত্র জয়নাল আবেদীন বিবিসি বাংলাকে নিশ্চিত করেন খবরটি। তবে পদত্যাগের কারণ হিসেবে চিঠিতে কি লেখা হয়েছে সেটি জানাতে পারেননি রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব। বিচারপতি এস কে সিনহার পক্ষ থেকেও কোন বক্তব্য জানা যায়নি। ২০১৭ সালে বাংলাদেশে জন্য আরেক আতঙ্কের কারণ ছিল নিখোঁজ বা গুমের ঘটনা। বছরের শেষ দিকে নভেম্বর মাসে নিখোঁজ হন বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সহকারী অধ্যাপক মোবাশ্বার হাসান। পরে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়। ইসলাম, রাজনীতি এবং জঙ্গিবাদ বিষয়ে সম্প্রতি তিনি দেশে-বিদেশে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এবং জার্নালে গবেষণামূলক প্রবন্ধ লিখেছেন। উদ্ধারের পর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার পর ফরহাদ মজহার এর আগে জুলাই মাসে কবি, কলামিস্ট, প্রবন্ধকার এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহারকে ভোর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জ���নায় তার পরিবার। ঢাকার শ্যামলীর নিজের বাসা থেকে ভোর পাঁচটার দিকে একটা ফোন পেয়ে বের হয়ে যান ফরহাদ মজহার।মি. মজহারের স্ত্রী ফরিদা আখতার দুপুরে বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন একটি ফোন পেয়ে তিনি বের হয়ে যান। তিন জুলাই রাতে যশোর থেকে পুলিশ উদ্ধার করে মি. মজহারকে। সকালে ঢাকায় ডিবি অফিসে নিয়ে তার জবানবন্দি নেয়া হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয় তিনি স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়ে ছিলেন আর মি. মজহারের পরিবার বলে তাকে অপহরণ করা হবে। পুরো বিষয়টি নিয়ে রহস্য তৈরি হয়। তবে যারা ফিরে এসেছেন তাদের অনেকেই আর মুখ খোলেন নি। এদিকে মানবাধিকার সংস্থা অধিকার বলছে ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর থেকে ৮০ জন নিখোঁজ হয়েছেন। তারা কোথায় গেছেন বা আদৌ ফিরে আসবেন কিনা সেটা নিয়ে ভীষণ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নিখোঁজদের পরিবারগুলো। যদি এই নিখোঁজ ব্যক্তিরা ফিরে না আসেন তাহলে আগামী বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালেও তাদের এই ভয়, শঙ্কা অব্যাহত থাকবে। মার্চের ২৪ তারিখ। স্থান বাংলাদেশের উত্তরের জেলা সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এলাকার আতিয়া মহল। +text: প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপার্সনের সাক্ষাত ভোটের পরে আবারো আন্দোলন করলেও বিএনপি সরকারকে নতুন নির্বাচন দিতে বাধ্য করতে পারেনি বরং আন্দোলনে সহিংসতার কারণে সমালোচিত হয়েছে। আর নির্বাচন বয়কটের ফলে বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাতো বটেই এমনকি সংসদে বিরোধী দলের স্থানেও এখন নেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনীতির মাঠে বিএনপি জোটকে অনেকটাই কোনঠাসা দেখা যায়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান দাবি করেন সরকার তাদেরকে কঠোরভাবে দমন করছে। "আমরাতো হরতাল অবরোধ কিছুই করতে পারি না। আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে তারেক রহমান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে লাখ লাখ মামলা রয়েছে।" ২০১৪ সালে বিএনপি জোটের বয়কটের কারণে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে। নির্দলীয় সরকারের দাবি এবং নির্বাচন ঠেকাতে ওই সময় বিএনপির আন্দোলনে দেখা গেছে ব্যাপক সহিংসতা। বিএনপির নির্দলীয় সরকারের দাবি যে সরকার মানবে না সেটি বার বারই সরকারি দল বলে আসছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যে বোঝা যায় দলীয় সরকারের অধীনে বিএনপিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য করতে চায়। আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমে�� বলেন- "এবারতো বিএনপির নির্বাচন না করার কোনো উপায় নাই। নির্বাচন তাদের করতেই হবে। আর যদি নির্বাচন না করে তাহলে আমরা জানি না বিএনপির ভবিষ্যৎ কী হবে?" নির্বাচন কমিশন সবসময় বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ। আওয়ামী লীগ বলছে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়া সঠিক পথেই এগুচ্ছে। তোফায়েল আহমেদের মতে আগামী নির্বাচনে ঐতিহাসিক এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন রাষ্ট্রপতির নিয়োগ দেয়া নতুন কমিশন। অন্যদিকে শুরুতে সার্চ কমিটির সদস্যদের নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিল বিএনপি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সাবেক নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন নির্বাচন কমিশনের ওপর রাজনৈতিক দলের আস্থাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। "কারণ রাজনৈতিক দলগুলো হচ্ছে ইলেকশন কমিশনের একটা বড় স্টেকহোল্ডার। তাদের যদি আস্থা না থাকে তাহলে সে নির্বাচন কমিশন যত ভালভাবেই নির্বাচন পরিচালনা করুক না কেন সেই আস্থার সংকট থেকেই যাচ্ছে"। কমিশনের প্রতি আস্থা নিয়ে মি. হোসেন বলেন, যদি নূন্যতম পক্ষে সবার কাছে মোটামুটি গ্রহণযোগ্য হয় তাহলেও সকল দলের আস্থা এরমধ্যে থাকবে। তার ভাষায়, "নির্বাচন কমিশন হান্ড্রেড পার্সেন্ট গ্রহণযোগ্য সবার কাছে করা সম্ভব নয়।" সাবেক নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন বিএনপির প্রতিষ্ঠার পর ইতিহাসে সবচে বেশি সময় এখন ক্ষমতার বাইরে রয়েছে। বর্তমান রাজনীতিক পরিস্থিতির কারণেই আগামী নির্বাচন এবং নতুন কমিশন বিএনপির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপি আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিয়েছে। নজরুল ইসলাম খান বলেছেন "সত্যি সত্যি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ যাদের প্রতিনিধি বানাতে চায় তারা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেবে। আমরা বিশ্বাস করি জনগণ যদি সে সুযোগটা পায় তাহলে আমাদের সুযোগ আছে ক্ষমতায় আসার। সে কারণে আমাদের কাছে এটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ যে নির্বাচন কমিশনটা যেন অনুগত না হয়, সরকারের ইচ্ছাপূরণের হাতিয়ার না হয়। যদি সেটাই হয় তাহলে জনগণের যত সমর্থনই থাকুক না কেন আমরা বিজয়ী হতে পারবো না।" আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ সংসদে বিরোধীদল না হলেও বিএনপি জোটই মূলত বাংলাদেশে রাজনীতিক বিরোধী শক্তি। তাই আগামী নির্বাচন এবং নতুন নির্বাচন কমিশনের গ���রহযোগ্যতার বিচারে বিএনপির রাজনীতি ও সিদ্ধান্তের দিকে বিশেষ দৃষ্টি থাকবে সবার। ২০১৪ সালে বিএনপি জোটের বয়কটের কারণে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে। নির্দলীয় সরকারের দাবি এবং নির্বাচন ঠেকাতে ওই সময় বিএনপির আন্দোলনে দেখা গেছে ব্যাপক সহিংসতা। +text: ২৭ বছর বয়সী এক নারীকে ধর্ষণ এবং হত্যার পর ভারতজুড়ে বিক্ষোভ হয়। গত মার্চ মাসে উত্তর প্রদেশে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন সেই নারী। সে মামলার শুনানিতে অংশ নিতে যাচ্ছিলেন। সেই নারী একটি হাসপাতালে সংকটজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন থাকার সময় শুক্রবার মারা যান। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ পাঁচজনকে আটক করেছে, যাদের মধ্যে দুজন মেয়েটিকে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত। ঠিক এক সপ্তাহ আগে আরেক নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। সে ঘটনা পুরো ভারতজুড়ে আলোড়ন তৈরি করে। দক্ষিণের হায়দ্রাবাদ শহরে ২৭ বছর বয়সী এক প্রাণী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর শরীরে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। তার পুড়ে যাওয়া মৃতদেহ উদ্ধারের পর বিচারের দাবিতে ভারতজুড়ে বিক্ষোভ হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করা হয়। কিন্তু অভিযুক্তদের যখন ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন তারা পুলিশের কাছ থেকে অস্ত্র চুরির চেষ্টা করে বলে পুলিশ বলছে। ফলে তাদের গুলি করে হত্যা করা হয় কর্মকর্তারা বলছেন। কিন্তু ধর্ষণের এই দুটো ঘটনা বিচ্ছিন্ন বিষয় নয়। গত এক সপ্তাহে আরো পাঁচটি ধর্ষণের ঘটনা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। আরও পড়ুন: ধর্ষণকারীকে 'পিটিয়ে হত্যার' দাবি ভারতীয় এমপির ধর্ষণকারী কোন ধর্মের, ভারতে বিতর্ক যখন তা নিয়ে ভারতে পথনাটক করতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার ৫ নারী ভারতে ঋতুমতী নারীরা কেন জরায়ু ফেলে দিচ্ছেন? ভারতে প্রতিদিন ৯২টি ধর্ষণের মামলা হয়। ভয়ের মধ্যে বসবাস ভারতে নারী ধর্ষণ এবং নারীদের প্রতি সহিংসতা এখনো অনেক বেশি। ইন্টারনেট-ভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারীরা বলছেন, তারা একটি ভয়ের পরিবেশে বসবাস করছেন। এছাড়া বাস্তবতার সাথে তাদের আপোষ করতে হয়। তাদের সবসময় শুনতে হয় - নিজেকে রক্ষা করে চলো, ঠিকমতো পোশাক পরিধান কর, একা ঘরের বাইরে যাবেনা অথবা বাসায় থাকো। ভারতের সমাজ গভীরভাবে পিতৃতান্ত্রিক। ধর্ষণ কিংবা যৌন সহিংসতার জন্য নারীদের দায়ী করার বিষয়টি ভারতের সমাজে নতুন কোন বিষয় নয়। খাটো স্কার্ট কিংবা জিন্স পরা, ছেলে-বন্ধু থাকা, রাতে দেরিতে বাসায় ফেরা অথবা মোবাইল ফোনে কথা বলা - এসব বিষয়ের জন্য ঘটনার শিকার নারীদের লজ্জা দেয়া হয়। ভারতের আইনে ধর্ষণের শাস্তি কী? ২০১২ সালে এক ছাত্রীকে গণধর্ষণ এবং হত্যাকাণ্ডের পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ হয়। এর ফলে ধর্ষণ বিরোধী কঠিন আইন প্রণয়ন করতে সরকার বাধ্য হয়। অ্যাসিড আক্রমণ এবং রাস্তায় উত্যক্ত করার মতো ঘটনার জন্য শাস্তি বাড়ানো হয়। নতুন আইনে অধিকাংশ ক্ষেত্রে শাস্তি বাড়িয়েছে। তবে ধর্ষণের অভিযোগে একাধিকবার অভিযুক্ত হওয়া অথবা ধর্ষণের কারণে কোমায় চলে যাওয়ার ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: কাশ্মীরের মানুষের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট বাতিল বাংলাদেশে পীর-সুফিদের রাজনীতির ভবিষ্যৎ বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের প্রতীক যে পাঁচ বিক্ষোভকারী ভরপেট খাওয়া বাংলাদেশিরাও কেন অপুষ্টির শিকার অনেক নারী অভিযোগ করেন, ধর্ষণের বিষয় নিয়ে থানায় গেলে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয়। আইন তাদের কতটা সাহায্য করছে? ভালো খবর হচ্ছে , যৌন সহিংসতার বিষয়ে মামলা করার জন্য নারীরা আগের চেয়ে বেশি এগিয়ে আসছে। ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো বলছে, ২০০৮ সালে এই সংখ্যা ছিল ২১,৪৬৭, কিন্তু ২০১৬ সালে এটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮০০০। কিন্তু নারীরা এখনো এসব ঘটনার মামলা করতে গিয়ে এবং বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছে। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, মামলা করতে থানায় গেলে কিংবা পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে গেলে এখনো তারা অবমাননার মুখে পড়েন। মামলা নথিবদ্ধ হলে তার কি বিচার পান? ভারতের বিচার ব্যবস্থায় রাজনৈতিক প্রভাব আছে। কিছু-কিছু হাই প্রোফাইল মামলায় আসামীরা অবাধে ঘুরছে। বিচারের ক্ষেত্রে দেরি হয়। প্রতি চারটি ধর্ষণ মামলার একটিতে সাজা হয়। যেসব মামলা সমাপ্তির দিকে যায় সেখানে এই হার রয়েছে। ২০১৮ সালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক দশকে পুলিশের কাছে ধর্ষণের যত অভিযোগ এসেছে তার মধ্যে ১২% থেকে ২০% মামলা সমাপ্তির দিকে গেছে। ধর্ষণের শিকার অনেক নারী এখনো বিচারের জন্য অপেক্ষা করছে। গত বছর সরকার জানিয়েছে যে জমে থাকা ধর্ষণের মামলার বিচার শেষ করার জন্য ভারতজুড়ে ১০০০ দ্রুত বিচার আদালত স্থাপন করা হবে। ভারতে ধ���্ষণের অনেক ঘটনা থানা পর্যন্ত আসেনা । যৌন সহিংসতার হার কি কমছে? ভারতে নারীদের প্রতি সহিংসতা কমার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। গত বছর থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন এক রিপোর্টে বলেছে যে নারীদের জন্য ভারত সবচেয়ে বিপদজনক দেশ। এক্ষেত্রে আফগানিস্তান, সিরিয়া এবং সৌদি আরবের চেয়েও ভারত এগিয়ে। সদ্য প্রকাশিত সরকারের এক জরিপে দেখা যাচ্ছে, ২০১৭ সালে ভারতে ৩৩,৬৫৮ টি ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার অর্থ হচ্ছে, প্রতিদিন ৯২টি। তবে একথা মনে রাখা প্রয়োজন যে ভারতে ধর্ষণের বহু ঘটনা থানা পর্যন্ত আসেনা। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, শিশুদের প্রতি যৌন সহিংসতা বাড়ছে। সরকারের অপরাধ সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্তে দেখা যাচ্ছে, ২০১২ সাল থেকে ২০১৬ পর্যন্ত শিশুদের প্রতি যৌন সহিংসতা দ্বিগুণ হয়েছে। অনেক মনে করেন, পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা এবং নারী-পুরুষ অনুপাতের বৈষম্যের কারণে নারীদের প্রতি সহিংসতা বাড়ছে। ছেলে শিশুর আশায় গর্ভপাতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর অর্থ হচ্ছে, ১১২ টি ছেলে শিশুর বিপরীতে ১০০ টি মেয়ে শিশু জন্ম নিচ্ছে। উত্তরের হরিয়ানা রাজ্যে সবচেয়ে বেশি গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এখানে নারী-পুরুষ অনুপাত ভারতের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছে। অনেকে মনে করেন, ভারতের চলচ্চিত্রে নারীদের যেভাবে উপস্থাপন করা হয় তাতে নারীদের সম্পর্কে একটি ধারণা জন্মে। ভারতে বিবিসির নারী বিষয়ক সংবাদদাতা দিভিয়া আরিয়া বলেন, বলিউড এবং আঞ্চলিক সিনেমায় নারী উত্যক্ত কারীদের ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়। এছাড়া বিষাক্ত পুরুষত্বকে স্বাভাবিকভাবে উপস্থাপন করা হয়ে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ভিকটিমরা কি বিচার পায়? শুক্রবার মারা যাওয়া ২৩ বছর বয়সী সে নারীর শরীর ৯০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। পুলিশ কর্মকর্তা প্রাভিন কুমার বলেন, এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত এবং বিচার হবে। এর পরদিন হায়দ্রাবাদ শহরে একটি আন্ডার পাসে আরেক নারীর মৃতদেহ পাওয়া গেছে। এসব ঘটনার বিচারের দাবিতে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছে। ইতোমধ্যে, অভিযুক্তদের মধ্যে দু'জনের মা বলেছেন, তাদের সন্তান যদি দোষী হয় তাহলে তাদের বিচার হোক। কিন্তু এখন আপাতত ভিকটিমের পরিবার নিজেদের ঘরের মধ্যে আবদ্ধ করে রেখেছে।বাড়ির সামনে একটি প্ল্যাকার্ডে লেখা আছে, 'কোন রাজনীতিবিদ নয়, মিডিয়া নয়, পুলিশ নয়, বহিরাগত নয়��' এর পরিবর্তে তারা চান অপরাধীদের শাস্তি। আরেকটি ভয়ঙ্কর অপরাধ ভারতকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। এবার উত্তর ভারতের উন্নাওতে ধর্ষণের শিকার ২৩ বছর বয়সী এক নারীকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। +text: ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাটির ছবি তিনি বলেন, নাতানজে পারমাণবিক কেন্দ্রের আগুনের কারণ তারা জানতে পেরেছেন, যদিও এর বিস্তারিত কিছু তিনি জানাননি। তবে আগুনে যেসব যন্ত্রপাতি পুড়ে গেছে সেগুলোর জায়গায় আরও উন্নত যন্ত্রপাতি সংযোজন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। পারমাণবিক কেন্দ্রটির সেন্ট্রিফিউজ সংযোজন ওয়ার্কশপে আগুন লেগেছিল বলে জানা যাচ্ছে। তবে ইরানের কর্মকর্তারা এ দুর্ঘটনার জন্য সাইবার নাশকতাকে দায়ী করছেন। প্রসঙ্গত, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে সেন্ট্রিফিউজ ব্যবহৃত হয়। এছাড়া এটি রিয়েক্টর এবং পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়। ইরানের অ্যাটমিক এনার্জি অর্গানাইজেশনের মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি বলেছেন নিরাপত্তাজনিত কারণে কর্মকর্তারা এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলছেন না। "এ ঘটনায় উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে, কিন্তু কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি," বলেন তিনি। ইরানে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আরও কয়েকটি জায়গায় আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। মিস্টার কামালভান্দি বলছেন, "এ ঘটনা অ্যাডভান্সড সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন ও উন্নয়নের গতিকে ধীর করতে পারে... ইরান ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের জায়গায় আরও বড় ভবন করবে যাতে আরও আধুনিক উপকরণ সংযোজিত হবে"। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: কত দ্রুত ইরান পরমাণু বোমা তৈরি করতে পারবে? ইরানের এই রিভোলিউশনারি গার্ডস আসলে কারা? ইরানের সাথে পরমাণু চুক্তিতে কী আছে? বৃহস্পতিবারের ঘটনা মিস্টার কামালভান্দি বলেন নির্মাণাধীন একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল শেডে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। পরে প্রকাশ করা একটি ছবিতে দেখা যায় ভবনটি আগুনে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত। পরে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্লেষকরা এটিকে নতুন সেন্ট্রিফিউজ সংযোজন কারখানা হিসেবে শনাক্ত করেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স ইরানি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে বলছে যে তারা বিশ্বাস করেন এটি সাইবার অ্যাটাকের ঘটনা, তবে তারা কোন প্রমাণ উপস্থাপন করেননি। আরও যেসব ঘটনা ঘটেছে পারচিন মিলিটারি কমপ্লেক্সের কাছে বিস্ফোরণের ছয়দিন পর নাতানজের আগুনের ঘটনা ঘটলো। ইরান কর্তৃপক্ষ সেখানে গ্যাস ট্যাংক বিস্ফোরণের কথা জানিয়েছে, কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন স্যাটেলাইটে তোলা ছবি থেকে দেখা যাচ্ছে যে এর কাছে মিসাইল উৎপাদন কেন্দ্র আছে। পারচিন তেহরানের কাছেই একটি জায়গা। পশ্চিমা শক্তিগুলো এটিকে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির গুরুত্বপূর্ণ জায়গা মনে করে। ইরান বরাবরই তাদের পারমাণবিক কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণ দাবি করে। এদিকে রোববার কর্মকর্তারা জানায় দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আহভাজে একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। পরে সেখানে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। নাতানজে অ্যাডভান্সড সেন্ট্রিফিউজ দ্বিগুণ করেছে ইরান কেন নাতানজ গুরুত্বপূর্ণ? তেহরান থেকে প্রায় আড়াইশো কিলোমিটার দক্ষিণে নাতানজ এবং এখানেই ইরানের সবচেয়ে বড় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সাইট। ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তিতে দেখা গেছে ইরান সম্মত হয়েছিলো যে কম মাত্রার ইউরেনিয়াম উৎপাদন করবে যা পরমাণুভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য তেল উৎপাদন করবে। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ানোর পর গত বছর ইরান এই চুক্তি থেকে সরে আসে। এরপর ইরান নাতানজে অ্যাডভান্সড সেন্ট্রিফিউজ দ্বিগুণ করা হয়েছে বলে জানায়। ইরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক কেন্দ্রে আগুন লেগে 'ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি' হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পারমাণবিক কর্তৃপক্ষের একজন মুখপাত্র। +text: প্যারিসে ভিগানদের বিক্ষোভ খাবারের প্লেটে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, মধু কিছুই থাকবেনা। ভিগানিজমে বিশ্বাসীরা এটাকে নিয়ে গেছেন আরও দূরে যেমন চামড়া, উল বা মুক্তার মতো বিষয়গুলো থেকেও দুরে থাকতে হবে। এটাকেই বলা হয় ভিগানিজম, প্রতিনিয়ত এতে বিশ্বাসী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে বিশ্বজুড়ে। আমেরিকায় ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে এই জীবনধারায় বিশ্বাসীদের সংখ্যা বেড়েছে ৬০০%, আর যুক্তরাজ্যে গত এক দশকে বেড়েছে ৪০০%। আর এই আন্দোলন এখন এতোটাই বিস্তৃত যে ফাস্ট ফুড চেইন ম্যাকডোনাল্ডস পর্যন্ত অফার দিচ্ছে "ম্যাকভিগান বার্গার"-এর। পহেলা নভেম্বর যারা 'ওয়ার্ল্ড ভিগান ডে' পালন করেন, এবং এর বাইরে যারা আছেন, তাদের সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি তথ্য। স্বাস্থ্য ভালো হওয়ার আশায় অনেকে ভিগান হচ্ছেন ১. স্বাস্থ্য সুবিধা কিংবা অসুবিধা যুক্তরাজ্যে সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে যারা মাংস কেনার খরচ কমাতে চান তাদের মধ্যে ৫০% এটা করতে চান স্বাস্থ্য সম্পর্কিত চিন্তা থেকে। সমীক্ষা বলছে, রেড মিট অর্থাৎ গরু ও ভেড়ার মাংস অথবা প্রক্রিয়াজাত করা মাংস ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যতালিকা যাতে থাকবে আঁশ জাতীয় খাবার এবং অনেক ফল ও সবজি তা কিছু ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে। কিন্তু ভিগানরা কি আসলেই বেশি স্বাস্থ্যবান? ভিগান ডায়েটের দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা নিয়ে কিছু সন্দেহ আছে অনেকের মধ্যে। গবেষণায় দেখা গেছে, ভিগান ও নিরামিষাশীদের মধ্যে তুলনা করলে দেখা যায় উদ্ভিদজাত খাবার যারা খায় তাদের কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয় ও তারা বেশি দিন বাঁচবে এমন কথা নেই। বরং নিরামিষ ভিত্তিক খাদ্য তালিকা যারা মেনে চলেন তাদের ভিটামিন-ডি, যা হাড়ের জন্য খুবই দরকারি, ভিটামিন-১২ ও আয়োডিনের সংকট হতে পারে। প্রাণীজাত যে কোনো কিছুর বিরুদ্ধে ভিগানরা ২. পরিবেশগত দায়িত্ব ভিগানিজমের প্রসার দিন দিন বাড়লেও একই সাথে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে মাংস বিক্রিও। চীন ও ভারতের মতো জনবহুল দেশগুলোতেও মাংস খাওয়া প্রতিনিয়ত বাড়ছে। কিন্তু এখন বিশ্বজুড়ে যেভাবে মাংস উৎপাদন হচ্ছে তা পরিবেশ সম্মত নয় বলে কথা উঠছে। দু'হাজার তের সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা জানায়, পশু উৎপাদন ১৪.৫% গ্রিনহাউজ কার্বন নি:সরনের জন্য দায়ী। মাংস উৎপাদনেও ব্যয় বেশি। যেমন, ৪৫০ গ্রাম লেটুস পাতার জন্য দরকার হয় ১০৪ লিটার পানি। আর একই পরিমাণ গরুর মাংসের জন্য লাগে ২৩,৭০০ লিটার পানি। জাতিসংঘের হিসেবে ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্ব জনসংখ্যা হবে প্রায় ১০০০ কোটি এবং তখন এখনকার চেয়ে ৭০% বেশি খাদ্য দরকার হবে। ভিগানরা বলছেন, এটি খাদ্যের বিষয় নয় বরং যৌক্তিক জীবনযাত্রার বিষয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিগান ক্যাম্পেইন জোরালো হচ্ছে ৩. ভিগানিজম কি মূলধারা হয়ে উঠছে? ভিগানুয়ারি একটা ব্রিটিশ চ্যারিটি সংস্থা যারা জানুয়ারি মাসে ভিগানিজমে অভ্যস্ত হওয়ার জন্য মানুষকে সহায়তা করে। তারা বলছে, প্রতি বছরই অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়ছে। ২০১৯ সালে ১৯০ দেশের আড়াই লাখ মানুষ স্বাক্ষর করেছে। যেহেতু প্রোটিনের বিকল্প উৎস আছে বাজারে সে কারণে ভিগানিজম বৈশ্বিক ইন্ডাস্ট্রিতে রূপ নিচ্ছে। ইকনোমিস্ট বলছে, ২০১৯ সালে ভিগানই হবে বড় ফুড ট্রেন্ড। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষ এ ধরণের ফুড টিপস পেতে বেশি আগ্রহী হচ্ছে। সর্বশেষ ���িসেব অনুযায়ী ইন্সটগ্রামে ভিগান বিষয়ে ৯২ মিলিয়ন পোস্ট এসেছে। উদ্যোক্তারা এর মধ্যে ব্যবসার সুযোগ খুঁজছেন। বড় বড় কোম্পানি গুলোও তাই দৃষ্টি দিচ্ছে এখানে। নেসলের মতো কোম্পানি বলছে, ভিগান পণ্য এখন আর অপ্রচলিত ধারার কিছু না। এগিয়ে আসছে অন্য প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিগুলোও। ভিগান বার্গার বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: চাকরি হারানোর ভয় জেঁকে বসেছে গণমাধ্যমে টিপু সুলতানের নাম কি মুছে ফেলতে চাইছে বিজেপি সড়ক দুর্ঘটনা: জীবনের দাম ৫০ হাজার টাকা ৪. অতিরিক্ত ভিগানিজমের খারাপ দিক প্রাণী ও পরিবেশের প্রতি ভালোবাসাই ভিগান আন্দোলনের মূল কথা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে উগ্র ভিগানিজম বিতর্ক ও সমালোচনা তৈরি করছে। কোথাও কোথাও কৃষক ও কসাইরা উগ্র প্রাণী অধিকার কর্মীদের আক্রমণের শিকার হয়েছেন। যখন আপনাকে খুনি বা ধর্ষক বলা হয় সেটি যথেষ্ট বাড়াবাড়িই মনে হয়, বলছিলেন একজন ব্রিটিশ কৃষক। তবে যুক্তরাজ্যের ৪২ ও বিশ্বজুড়ে ১০০ সংগঠনকে নিয়ে গড়ে ওঠা সেভ মুভমেন্ট বলছে তারা অহিংস ক্যাম্পেইন নীতি গ্রহণ করবেন। আবার কিছু ভিগানের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠছে কারণ তারা কাঠবাদাম ও ব্রকলি খাচ্ছেন অথচ এ গুলোর ওপর মৌমাছি নির্ভর করে থাকে। ম্যানিলায় প্রাণী অধিকার কর্মীদের কর্মসূচি ৫. ভিগানিজম নতুন কিছু নয় সোজা কথায় বললে, ভিগান শব্দটি এসেছে চল্লিশ এর দশকে যখন ডোনাল্ড ওয়াটসন যুক্তরাজ্যে 'দি ভিগান সোসাইটি' প্রতিষ্ঠা করেন। নিরামিষাশী এই ব্যক্তি ডেইরি খাতে প্রাণীদের প্রতি নিষ্ঠুরতায় খুবই বেদনাহত ছিলেন। তিনি অপ্রাণীজাত নিরামিষাশী ধারণাটি নিয়ে আসেন। কিন্তু ধারণাটি আসলে প্রাচীন ভারতও পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় এলাকায় ছিলো প্রায় ২৫০০ হাজার বছর ধরে। এর শুরুটা ধারণা করা হয় ভারত থেকেই হয়েছিলো। এটা হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈনধর্মের সাথে সম্পর্কিত। ইউরোপে প্রাচীন গ্রিসে সেই পিথাগোরাসের সময় থেকে এটি বিদ্যমান ছিলো। আসলে ভেজেটারিয়ান মূলধারায় আসার আগে যারা মাংস খেতো না বলা হতো তারা পিথাগোরিয়ান ডায়েট অনুসরণ করছেন। ভিগান লাইফ স্টাইলের প্রধান লক্ষ্য হলো কোনো প্রাণীকে ক্ষতিগ্রস্ত না করা। +text: নতুন চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে ঈদের তারিখ উনত্রিশতম রোজার সন্ধ্যেবেলায়, অর্থাৎ আগামী রবিবার জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয়ার পরই নিশ্চিতভাবে জানা যাবে ঈদের দিনটি। ঐতিহাসিকভাবেই এমনটা হয়ে আসছে। কিন্তু জোতির্বিজ্ঞানিরা অনেক আগেই হিসেবে করে বের করে ফেলেছেন, এবার রোজা হবে উনত্রিশটি, ঈদ হবে সোমবার। এমনকি তারা আগামী ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রতিটা ঈদের দিন তারিখ, প্রতিটি হিজরি মাস শুরু হওয়ার সুর্নির্দিষ্ট দিন জানেন। বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের প্রয়াত অধ্যাপক আনোয়ারুর রহমান খান আগামী ২০২৫ সাল পর্যন্ত চাঁদের এই গতিবিধির হিসেব করে গেছেন। ততদিন পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রতিটি ঈদের দিনক্ষণ, প্রতিটি হিজরী মাসের শুরু হবার সময় এখন জোতির্বিজ্ঞানীদের জানা। সোসাইটির সহ-সভাপতি মুনির হাসান বিবিসিকে এ তথ্য জানিয়ে বলছেন, "আমরা বলছি, নতুন চাঁদের জন্ম হবে শনিবারে। কিন্তু সে চাঁদটা দেখা যাবে না। কারণ সেটার আলোকিত অংশ এত কম যে সেটা আমাদের চোখে পড়বে না। রোববারে সন্ধে সাতটা একুশ মিনিটে চাঁদের আলোকিত অংশ অনেক বেশি অর্থাৎ ১৪% থাকবে, ফলে সেটা খালি চোখে দেখা যাবে"। "এটা কিন্তু শুধু চাঁদের বেলায় না, আমরা আপনাকে বলতে পারব এর পরের সূর্যগ্রহণটি কবে হবে, এর পরের চন্দ্রগ্রহণটা কবে হবে। খুবই সহজ হিসেব এটা, ক্যালকুলেশন করেই বের করে ফেলা যায়"। অথচ প্রতি বছর ঈদ এলেই মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে উনত্রিশ রোজা শেষে ঈদ হবে না কি ত্রিশ রোজা শেষ ঈদ হবে। এই প্রশ্নের উত্তর জানা যায় উনত্রিশতম রোজার সন্ধেবেলায়। টেলিস্কোপে আকাশে ঈদের চাঁদ দেখার চেষ্টা করছেন মালয়েশিয়ার এক মুসলিম কারণ জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি ওইদিন সন্ধেবেলায় এসে একটি বৈঠক করে ঠিক করে মাসটি উনত্রিশ দিনে হবে নাকি ত্রিশ দিনে হবে। আর এজন্য তাদের ব্যবহৃত একমাত্র পদ্ধতি হলো খালি চোখে চাঁদ দেখা। অর্থাৎ, বাংলাদেশের ভূখণ্ড থেকে এই চাঁদ দেখা কমিটির নির্ভরযোগ্য কোনো ব্যক্তিকে স্বচক্ষে চাঁদ দেখতে হবে। কিন্তু যেখানে বৈজ্ঞানিক হিসেব নিকেশের মাধ্যমে যেখানে দিনটি সম্পর্কে আগেভাগেই নিশ্চিত জোতির্বিজ্ঞানীরা, সেখানে শেষ দিন পর্যন্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষা কেন? চাঁদ দেখা কমিটির সদস্য ও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের ভারপ্রাপ্ত খতিব মিজানুর রহমান বলছেন, "যদি তাদের হিসেবে ১% গড়মিল হবারও সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, সেক্ষেত্রে কি করবো আমরা? সেক্ষেত্রে আমাদের দেখার উপরেই নির্ভর করতে হবে"। মি: ��হমান বলছেন, ঈদ, রোজা, হিজরী মাস ইত্যাদি যেহেতু ইসলাম ধর্মের বিধান অনুযায়ী চলে, সেহেতু তারা ধর্মীয় নির্দেশনা মেনেই এটা করবেন, এটাই নিয়ম। অ্যাস্ট্রোনোমিক্যাল সোসাইটি যদিও তাদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রবিবার সন্ধেবেলায় চাঁদ উঠবার কথা হিসেব নিকেশ সহকারে বলে দিচ্ছে, কিন্তু এখানে তারা 'নিশ্চিত' শব্দটি ব্যবহার না করে 'সম্ভাবনা' শব্দটি ব্যবহার করছে ওই ইসলামী নিয়মের ব্যাপারটি মাথায় রেখেই। যদিও সোসাইটির মুনির হাসান বলছেন, তারা হিসেব শুরু করার পর থেকে অদ্যবধি কখনো ভুল প্রমাণিত হননি, আশা করেন ভবিষ্যতে ভুল হবে না। কিন্তু এটাও ঠিক, আপনি যদি এখনই জেনে যান ২০২৫ সাল বা তারও অনেক বছর পর পর্যন্ত প্রতিটি ঈদুল ফিতরের দিনক্ষণ, তাতে উত্তেজনা কোথায়। বরং উনত্রিশতম রোজার সন্ধেবেলায় নিজ চোখে চাঁদ দেখে ঈদের দিনক্ষণ সম্পর্কে জানার মধ্যে একটি আনন্দের ব্যাপার আছে বৈকি। আরও পড়ুন: আলোচিত অভিনেত্রী হ্যাপি যেভাবে 'আমাতুল্লাহ' হলেন আয়কর দিলে কি মুসলিমদের যাকাত দিতে হয়? সৌদি আরবের নতুন যুবরাজ সম্পর্কে পাঁচটি তথ্য যৌথ প্রযোজনার নামে কলকাতার ছবি চালানো হচ্ছে? ঈদের দিনের জামাতের ছবি। (ফাইল ছবি) বাংলাদেশে মুসলমানদের সবচাইতে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতর কবে হবে? প্রতিবছরের মতো এবারও মানুষের মনে একই প্রশ্ন। +text: চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের প্রস্তাবিত রুট তবে যখন বা যেখানেই বৈঠকটি হোক না কেন, সেই বৈঠকের ব্যাপারে উত্তর কোরিয়ার শক্তিশালী প্রতিবেশি চীনের সতর্ক দৃষ্টি থাকবে। যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের সম্পর্ক বেশ অস্বস্তিকর। এমন প্রেক্ষাপটে বাণিজ্য সম্পর্কের পার্থক্য কমিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল বেইজিং সফরে গেছে। কিন্তু একইসাথে চীন তাদের ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড বা এক অঞ্চল, এক পথ, এই নীতি নিয়ে এগুচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সী পেক নামের চায়না-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর তৈরির কাজ শুরু করার বিষয়ে জোর দেয়া হচ্ছে। এখন চায়না পাকিস্তান করিডোর তৈরির প্রশ্নে ইসলামাবাদও বেশ আগ্রহী। আরো পড়ুন: আফগানিস্তানকেও অর্থনৈতিক করিডোরে চায় চীন ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতিমধ্যেই পাকিস্তানকে হুশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, ইসলামবাদকে সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয়া বন্ধ করতে হবে।অন্যথায় যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে সাহায্য বন্ধ করে দেবে। ইসলামাবাদে শীর্ষ স্থানীয় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছেন বিবিসির সংবাদদাতা। শিক্ষার্থীদের অনেকে মনে করেন, অর্থনৈতিক করিডোর নিয়ে আপত্তির কারণেই মি: ট্রাম্প পাকিস্তানকে সাহায্য বন্ধের হুমকি দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের একজন মনে করেন, "চায়না এখন বিশ্ব অর্থনীতিতে সুপার পাওয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে।চায়না এবং পাকিস্তান আগে থেকেই কাছের বন্ধু। এখন যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে চায়নার সাথেই পাকিস্তানের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করা উচিত।" ইসলামাবাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষার্থী বলছিলেন, "আমি মনে করি, যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টের মুল সমস্যা অর্থনৈতিক করিডোর নিয়ে।মি: ট্রাম্প চায়না পাকিস্তান করিডোর তৈরি হোক।" বিশ্ববিদ্যালয়টির একজন শিক্ষক পারভেজ আলীও অর্থনৈতিক করিডোরের পক্ষে কথা বলেন। "পাকিস্তানের ভবিষ্যত হচ্ছে চায়না। সেটা এখানকার টেলিভিশন, রেডিও বা গণমাধ্যমের খবর দেখলেই বোঝা যায়, দুই দেশের বন্ধুত্ব এখন গভীর হচ্ছে।সংবাদমাধ্যমেও সেটাই তুলে ধরা হচ্ছে।সাধারণ মানুষও চীনকে কাছের বন্ধু হিসেবে দেখছে।" অর্থনৈতিক করিডোর তৈরির বিসয়টি চীনের উচ্চাভিলাষী প্রকল্প এই শিক্ষক এটাও বলছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে পাকিস্তান এখন চায়নার সাথে সম্পর্ক আরও গভীর করার বিষয়েই গুরুত্ব দিচ্ছে। অনেক চীনা নাগরিক যে ইসলামাবাদ এবং লাহরে বসবাস করছে, সে কথাও তিনি তুলে ধরেন। ইসলামাবাদের রাস্তায় হাটলেই অনেক চীনা নাগরিক চোখে পড়বে। এখানে অনেক চায়নীজ রেস্ট্ররেন্ট আছে। নতুন নতুন অনেক চায়নীজ রেস্টুরেন্ট হচ্ছে। পরিবেশটাই দুই দেশের গভীর সম্পর্কের কথা বলে দেবে। অধ্যাপক পারভেজ আলী বলছিলেন, চীন পাকিস্তানে বেশ প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে। "যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পাকিস্তানের সম্পর্ক খারাপ হয়েছে। যখন ডোনাল্ড ট্রাম্প পাকিস্তানকে সাহায্য বন্ধের হুমকি দিয়েছেন, তখন সাধারণ মানুষও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কে আর আগ্রহী নয়। যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে কোটি কোটি ডলার দিচ্ছে, এই মিথ্যা বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে দশ বছর আগে পাকিস্তান পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল ছিল।কিন্তু চীন পাকিস্তানকে এর কয়েকগুণ বেশি সাহায্য করছে।ফলে পাকিস্তান চীনের সাথেই এখন বিশ্বে এগুতে চায়।" চীন পাকিস্তানে পারমাণবিক চুল্লীও নির্মাণ করছে। দু'টির নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যেই শেষ পর্যায়ে এসেছে। আরও কয়েকটির কাজ চলছে। চীন থেকে ইতিমধ্যে পাকিস্তানের ভিতর দিয়ে মালামাল পরিবহণ করা হয়েছে গোয়াডর বন্দর পর্যন্ত। সেখান চীনের পন্য গেছে আফ্রিকায় এবং পশ্চিম এশিয়ায়। এখন অর্থনৈতিক করিডোর তৈরি করার বিষয়টি চীনের উচ্চাভিলাষী প্রকল্প। ইসলামাবাদে নতুন একটি চায়নীজ রেস্টুরেন্টের একজন কর্মী বলছিলেন,দুই দেশের ভবিষ্যত সম্পর্ক আরও ভাল হবে বলে তিনি মনে করেন্ "এখন দুই দেশের সম্পর্ক এখন খুব ভাল। ভাবিষ্যতে আরও গভীর হচ্ছে আমাদের সম্পর্ক।" কমিউনিস্ট দেশ চীন এবং ইসলামী প্রজাতন্ত্রের পাকিস্তানের এই সম্পর্ক নিয়ে বিশ্লেষকদেরও কৌতুহল কিন্তু বেড়েই চলেছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং আনের বৈঠক নিয়ে আমেরিকার সাধারণ মানুষের মধ্যে নানান আলোচনা রয়েছে। +text: চীন সামরিক সরঞ্জামের আধুনিকীকরণের ক্ষেত্রে বেশী এগিয়েছে নৌ এবং বিমান বাহিনীর ক্ষেত্রে লন্ডনের ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ-আইআইএসএস এর বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, নিজস্ব সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে ওয়াশিংটন যেমনটি ভেবেছিল সেই মাত্রা অনেকটাই ছাড়িয়ে গেছে চীন এবং রাশিয়া। এর মধ্যে চীন তার সামরিক সরঞ্জামের আধুনিকীকরণের ক্ষেত্রে বেশি এগিয়েছে বিশেষ করে নৌ এবং বিমান বাহিনীর ক্ষেত্রে। আইআইএসএস-এর ১৯৫৯ সালের বৈশ্বিক বিবেচনায় সামরিক দক্ষতা এবং প্রতিরক্ষা ব্যয়ের বার্ষিক মূল্যায়নকে কেন্দ্র করে, এই সামরিক ভারসাম্য বিবেচনা করা হয়েছে। অবশ্য সামরিক ক্ষেত্রে চীনের রূপান্তর এক সময়ে খুব বেশি হয়নি। তবে এখন অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য হারে চীনের সামরিক সমৃদ্ধি এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে তাকে ওয়াশিংটনের নিকট প্রতিদ্বন্দ্বীই বলা যেতে পারে। আরও পড়ুন: চীন-আমেরিকা বাণিজ্য যুদ্ধ, জিতবে কে? বাংলাদেশ-মিয়ানমার সামরিক শক্তির পার্থক্য কতটা? প্রতিবেশীদের তুলনায় বাংলাদেশের সামরিক ব্যয়ের চিত্র ভারসাম্যের গতি পরিবর্তন? গত সপ্তাহের শেষ দিকে 'দ্য মিলিটারি ব্যাল্যান্স ২০১৮' বা ২০১৮ সালের বার্ষিক সামরিক ভারসাম্য প্রতিবেদন প্রকাশের পর আইআইএসএস-এর কয়েকজন বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলেছেন বিবিসির প্রতিবেদক। প্রতিবেদনটিতে তিনি বিভিন্ন পরিসংখ্যান এবং সংক্ষিপ্তসার থেকে আরো বিস্তারিত বোঝা��� চেষ্টা করেছেন যে বিশ্বের সামরিক শক্তির উত্থানের গতি প্রকৃতি। অতি দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বা আলট্রা লং রেঞ্জ ব্যালিস্টিক মিসাইল থেকে শুরু করে পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধ বিমান- এসবের উদ্ভাবন চীনের অগ্রগতি এবং অসাধারণ প্রযুক্তিগত ক্ষমতারই প্রকাশ। একটি সশস্ত্র চীনা ড্রোন বিমান মার্কিন ভাবনারও সীমা ছাড়িয়ে গেছে চীন গত বছর টাইপ-৫৫ ক্রুজার- ছিল তাদের বহরে সংযোজিত সর্বশেষ যুদ্ধ জাহাজ- যা কিনা ন্যাটো-র অন্তর্ভুক্ত যে কোনো নৌ বাহিনীর জন্যেই ভাবনার বিষয় হতে পারে। এখন চীন কাজ করছে এমন একটি বিমানবাহী রণতরী নিয়ে, যা কিনা সবধরনের সুযোগ সুবিধা নিয়ে যুগ্ম সামরিক সদর দপ্তর হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। অস্ত্রশস্ত্র, বিমান প্রতিরক্ষা থেকে শুরু করে পদাতিক আক্রমণের সবধরনের ব্যবস্থাই রয়েছে তাতে, ঠিক যেমনটি যুক্তরাষ্ট্রেরও রয়েছে। নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে চীন রাশিয়ার কাছ থেকে উন্নত সামরিক প্রযুক্তি পেয়েছিল। সেটি তাদের সহায়তা করে নৌ আর বিমান বাহিনীকে শক্তিশালী করতে। এখন বেশি আলোচনায় আছে চীনের ফিফথ জেনারেশন ফাইটার বা পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান। যাতে কিনা রয়েছে 'স্টেলথ প্রযুক্তি', যার ফলে এটির সুপারসনিক বা শব্দের চেয়ে বেশি গতি সম্পন্ন এবং অতি সূক্ষ্ম বিমান প্রযুক্তি দিয়ে নির্মিত। তবে ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ-এর বিশেষজ্ঞদের এ নিয়ে কিছু সন্দেহ রয়েছে। তাদের একজনের মতে, "নিচ দিয়ে উড়ে যেতে সক্ষম এমন বিমান চালানোর ক্ষেত্রে চীনা বিমান বাহিনীর এখনো উপযুক্ত কৌশলে উন্নতি করতে হবে। সেই সাথে চতুর্থ প্রজন্মের বিমানের প্রযুক্তির আরো কিছু সংমিশ্রণ ঘটাতে হবে এই পঞ্চম প্রজন্মের বিমানে"। থাই সেনাবাহিনী ব্যবহার করছে চীন নির্মিত এই ট্যাংক তারপরও এক্ষেত্রে চীনের অগ্রগতি সুস্পষ্ট বলেই মত দেন তিনি। বিশেষ করে এয়ার টু এয়ার বা বিমান থেকে বিমানে আঘাত করে এমন ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষেত্রে এটি যেকোনো পশ্চিমা শক্তির সাথে পাল্লা দিতে পারে বলেই মনে করেন সেই সামরিক বিশেষজ্ঞ। শীতল যুদ্ধের শেষে এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র অনেক বেশি এগিয়ে থাকলেও চীন এখন সে অবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করার পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বলেই ইঙ্গিত দিয়েছে আইআইএসএস-এর বিশ্লেষণ। বিশেষ করে চীনের দূর পাল্লার এয়ার টু এয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের সক্ষমতা তাকে সে অবস্থায় নিয়ে এসেছে। আইআইএসএস-এর 'মিলিটারি ব্যাল্যান্স' এর রচয়িতা বলছেন যে ২০২০ সাল পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে চীন এই ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নয়ন ঘটিয়ে যাচ্ছে। তবে আধুনিকায়নের হিসেবে পিছিয়ে আছে চীনের পদাতিক বাহিনী। চীনা সামরিক বাহিনী ব্যবহৃত অন্তত অর্ধেক সমরাস্ত্রকে আধুনিক হিসেবে বিবেচনা করা যায় না। তবে সেখানেও থেমে নেই চীন। ২০২০ সাল পর্যন্ত উন্নয়নের একটি লক্ষ্যমাত্রা ধরে তারা 'যান্ত্রিক' এবং 'তথ্যগত' বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে। চীন এসব সমরাস্ত্রের উন্নতি করে যাচ্ছে স্পষ্টতই একটি কৌশলকে সামনে রেখেই। সমরবিদ্যার ভাষায় একে বলা যায় 'এন্টি এক্সেস এরিয়া ডিনায়াল', এতে চীনের লক্ষ্য মার্কিন বাহিনীকে যতটা সম্ভব তার ভূমি থেকে দূরে রাখা। সেই কৌশলকে মাথায় রেখেই দূর পাল্লার বিমান হামলা ও নৌ বাহিনীর সক্ষমতা বাড়িয়ে যাচ্ছে চীন, যা কিনা মার্কিন রণতরীকে প্রশান্ত মহাসাগরের দূরবর্তী স্থানেই প্রতিহত করতে পারে। চীন কেবলমাত্র সমরাস্ত্রের উন্নতি ঘটিয়েই প্রবল পরাশক্তি হচ্ছে না। অস্ত্র রপ্তানির বাজারেও চীনের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা তাৎপর্যপূর্ণ। মানববিহীন যুদ্ধবিমান যা ড্রোন নামেই বেশি পরিচিতি পেয়েছে তার বাজারের হিসেবই যদি করা যায়। যুক্তরাষ্ট্র যদিও সবার আগে একে বিশ্বে পরিচিত করে তোলে। আর তাদের তৈরি এসব মানববিহীন যুদ্ধবিমান বিক্রিতেও মার্কিনীরা কেবল বেছে নেয় খুব কাছের মিত্রদের যেমন যুক্তরাজ্য বা ফ্রান্স। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: যেসব কারণে গাঁজা বৈধ করতে যাচ্ছে ক্যানাডা বিচার-বহির্ভূত হত্যার বিরুদ্ধে সরকারপন্থী ১০ বুদ্ধিজীবী রোজার সময় ঋতুস্রাব নিয়ে নারীদের লুকোচুরি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে দ্যা পিপলস লিবারেশন আর্মির তবে চীনের এমন কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। 'মিলিটারি ব্যাল্যান্স'-এর তথ্য মতে চীনের তৈরি সশস্ত্র মানববিহীন যুদ্ধ বিমান কিনেছে মিশর, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে শুরু করে মিয়ানমার পর্যন্ত। অস্ত্র বাণিজ্যের দিক থেকে চীন এখন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে উদীয়মান হুমকি। বিশ্লেষকদের মতে, চীন যেসব অস্ত্র বিক্রি করে সেগুলো পশ্চিমা অস্ত্রের অন্তত ৭৫ ভাগ সক্ষমতা সম্পন্ন, কিন্তু দাম সেগুলোর প্রায় অর্ধেক, বাণিজ্যের বিচারে যা আসলে অবশ্যই খুবই লাভজনক পরিস্থিতি। স্থলযুদ্ধের সমরাস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্রে অবশ্য চীন এখনো কিছুটা পিছিয়ে। তাদের এখনো রাশিয়া বা ইউক্রেনের অস্ত্রের ক্রেতাদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হচ্ছে। তবে ২০১৪ সালে কিয়েভ যখন থাইল্যান্ডে তাদের ট্যাঙ্ক বিক্রি করতে ব্যর্থ হলো তখন সেই বাজার দখল করলো চীনের ভিটিফোর ট্যাঙ্ক। আইআইএসএস-এর বিশ্লেষকদের মতে চীন এখন আফ্রিকার কিছু দেশের কথা মাথায় রেখে ট্যাঙ্ক তৈরি করছে। যেখানে রাস্তাঘাট খুব উন্নত নয়- সেসব দেশের জন্যে হালকা ওজনের ট্যাঙ্ক বানানোর চেষ্টা চলছে। চীনের অত্যাধুনিক অস্ত্র উদ্ভাবন কেবল তাদের প্রতিবেশীদেরই নয়, অন্য অনেক দেশকেই এখন চিন্তায় ফেলছে। পশ্চিমা দেশগুলো বিমান যুদ্ধের প্রযুক্তি আর সক্ষমতার দিক দিয়ে অন্তত তিন দশক আধিপত্য বিস্তার করে আসলেও এখন চীনের কৌশল সেটিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে। চাহিদা অনুযায়ী তৈরি করা চীনের সামরিক প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম ক্রেতাদের কাছে গ্রহণযোগ্যতার বাড়িয়ে তুলছে। একটি পশ্চিমা ইউরোপীয় দেশকে হয়তো কখনো চীনের সাথে সরাসরি যুদ্ধ করতে হবে না। তবে অন্যদের হাতে অত্যাধুনিক চীনা অস্ত্রের মুখোমুখি হয়তো তাদের হতেই পারে। চীনের সামরিক শক্তি যে গতিতে বাড়ছে তা অনেক বিশ্লেষকের হিসেবকেই অতিক্রম করে গেছে। +text: এ ধরণের সাইট থেকেই অর্ডার দিয়ে পছন্দনীয় পণ্য কেনা যায়, নেয়া যায় বিভিন্ন ধরণের সেবা। ইন্টারনেটভিত্তিক ব্যবসায়ীদের সংগঠন, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এই ঘোষণা দিয়েছে । সংগঠনটি বলছে, বর্তমানে বাংলাদেশে পাঁচশ’র মতো ই-কমার্স ওয়েবসাইট রয়েছে। এছাড়া ফেসবুকে কমপক্ষে ৩০০০ পেজ রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য ও সেবাসমূহ অনলাইনে বিক্রি করছেন। বাংলাদেশে অনলাইন কেনাবেচার কি হাল? আমার দেশ আমার গ্রাম নামে একটি অনলাইন প্রতিষ্ঠানের প্রধান সাদেকা হাসান বিবিসিকে জানান ২০০৯ সালে তারা বাংলাদেশে কাজ শুরু করেন। " ২০১৪ আমাদের জন্য একটা মাইলফলক গেছে। বিক্রি অনেক বেড়ে গেছে। চমৎকার পরিবর্তন বলা যায়"। এখন যদি অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হয়, অনেকে উদ্যোগী হয় তাহলে অনেকে না জেনে না বুঝে এটা শুরু করবে। যেভাবে অগ্রগতি হচ্ছে সেভাবেই পড়ে যাবে। অনলাইন ব্যবসার চ্যালেঞ্জ কি জানতে চাইলে তিনি বলেন ই-কমার্স কিন্তু একটা আস্থার উপর গড়ে উঠে। সাদেকা হাসান বলেন কাস্টমার কিন্তু পণ্যটা দেখছেনা, ধরছেনা। যে কোম্পানি সার্ভিস দিবে তার দায়িত্ব থাকে পণ্যটা কাস্টমারের কাছে পৌঁছে দিতে হয়। উদ্যোক্তারা যদি অভিজ্ঞ না হয়, প্রয়োজনীয় উপকরণ না থাকলে তাহলে এ ব্যবসায় ধ্বস নামবে। তিনি বলেন এটাকে একটা পলিসির মধ্যে রাখলে সফলতা আসবে। তিনি জানান বাংলাদেশে তারাই প্রথম ই-কমার্স শুরু করেন ও সাফল্যও তাদের রয়েছে। “যে কোন ব্যাংক একাউন্ট থাকলেই গ্রাহক কার্ড ব্যবহার করে অনলাইনে পণ্য কিনতে পারবেন। পলিসি লেভেল থেকে এগুলো কিন্তু খোলা আছে। যেসব ব্যাংক যে সার্ভিস দিচ্ছে তাদের একটু প্রমোশন দরকার”। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ঢাকায় কিছু গ্রাহক আছে হয়তো সবজি মাছ কিনছে। কিন্তু ৭০ ভাগ অর্ডার এসেছে ঢাকার বাইরে থেকে। এগুলো একটু প্রমোট করলে মনে হয় মার্কেট ওখানেই”। ২০১৫ সালকে বাংলাদেশে ‘ই-কমার্স বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। +text: ধান কাটার মৌসুমে পাহাড় থেকে হাতি নেমে আসে লোকালয়ে তবে বনবিভাগ বলছে, হাতির যাওয়া-আসার পথ মুক্ত রাখলে এ ধরণের দুর্ঘটনা হয়তো এড়ানো সম্ভব হতো। বোয়ালখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ নেয়ামতউল্লাহ জানিয়েছেন, রোববার সকালে উপজেলার কধুরখিল, সৈয়দনগর এবং জ্যৈষ্ঠপুরা নামক পাশাপাশি তিনটি গ্রামে হাতির পৃথক আক্রমণের শিকার হয়ে তিনজন মারা গেছেন। পুলিশ কী বলছে? বোয়ালখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিঃ নেয়ামতউল্লাহ জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে জ্যৈষ্ঠপুরা পাহাড় থেকে মোট আটটি হাতি লোকালয়ে চলে আসে। স্থানীয় মানুষেরা হাতিগুলোকে একদিনের বেশি সময় ধরে পাহাড়ের পাদদেশে এক জঙ্গলে ঘিরে রাখে। এরপর রোববার সকালের দিকে হাতিগুলো দুই ভাগ হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। বন বিভাগ বলছে, হাতির যাওয়া-আসার পথ মুক্ত রাখলে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব "একদল হাতি সৈয়দনগরের চান্দারহাটে এবং জ্যৈষ্ঠপুরায় হামলা চালায়, এবং সেখানে দুই জন মানুষ নিহত হন। এছাড়া সেখানকার ফসলী জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অন্যদল হামলা চালায় কধুরখিলে।" বিষয়টি নিয়ে ঐ তিনটি গ্রামেই আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে তিনি জানিয়েছেন। মিঃ নেয়ামতউল্লাহ জানিয়েছেন, এ সপ্তাহেই সাতকানিয়া, লোহাগড়া এবং বাশখালীসহ চট্টগ্রামের আরো কয়েকটি উপজেলায় হাতি লোকালয়ে নেমে আসার ঘটনা ঘটেছে। বন ���িভাগ কী বলছে? চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বখতিয়ার নূর সিদ্দিকী বলেছেন, খাবার সংকটের কারণে প্রায়শই পাহাড় থেকে হাতি লোকালয়ে নেমে আসার ঘটনা ঘটে। কিন্তু তাদের ফিরে যাবার পথ খোলা রাখলে সাধারণত হাতি মানুষের ওপর আক্রমণ চালায় না। "মূলত ধান পাকার সময় হলে পাহাড় থেকে দল বেধে হাতি লোকালয়ে নেমে আসে, এবং যে পথে হাতি নেমে আসে, সে পথেই ফিরে যায়। যে কারণে হাতির ফেরার পথ যদি বন্ধ না রাখা হয় তাহলে সাধারণত হাতি হামলা চালায় না।" "এবং হাতি সবসময় একটি নির্দিষ্ট রুটে বা পথেই আসে। কিন্তু অনেক সময়ই দেখা যায় স্থানীয় বাসিন্দারা হয়তো ঐ পথটি অবরুদ্ধ করে রাখে, বা ভয় পেয়ে তারা ধাওয়া দেয় বা হামলা চালায়। যে কারণে হাতি তখন হিংস্র আচরণ করে।" তিনি জানিয়েছেন, চট্টগ্রামে মূলত দুইটি রুট ধরে হাতি লোকালয়ে নেমে আসে। একটি হচ্ছে রাঙ্গুনিয়া-চন্দনাইশ-লোহাগড়া-সাতকানিয়া-চুনটি রুট, আরেকটি হচ্ছে চকরিয়া-পেকুয়া-বাশখালী-আনোয়ারা এই রুট ধরে। বন বিভাগের কর্মকর্তা মিঃ সিদ্দিকী জানিয়েছেন, হাতির ফিরে যাওয়ার অন্তত একটি পথও যদি মুক্ত রাখা যেত তাহলে এ ধরণের দুর্ঘটনা হয়তো এড়ানো সম্ভব হতো। তবে পাহাড়ে খাবার সংকট হবার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে আগের তুলনায় লোকালয়ে হাতি নেমে আসার ঘটনা ঘটছে বলে মনে করেন বন কর্মকর্তা। কয়েক মাস আগে বোয়ালখালীতে বন্য হাতির আক্রমণে এক ব্যক্তির নিহত হবার ঘটনা ঘটেছিল। যেভাবে নিহত নেতাকে বিদায় জানাচ্ছে হাতির দল আরো পড়ুন: গোলাপী বল টেস্টে 'ভরাডুবি' বাংলাদেশের ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্ত কি স্রেফ উর্ধ্বতনদের রক্ষার হাতিয়ার গ্রামীণফোনকে ২০০০ কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় পাহাড় থেকে লোকালয়ে চলে আসা বন্য হাতির আক্রমণে তিনজন মানুষ নিহত হয়েছেন। +text: ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে ভারতের উড়িষ্যার পুরী এবং আশপাশের জেলাগুলোতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আর চট্টগ্রাম বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত এবং কক্সবাজার এর জন্য ৪ হুঁশিয়ারি সংকেত থাকবে। আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান খান বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, "ঘূর্ণিঝড়টি আগামীকাল [শুক্রবার] দুপুরের দিকে ভারতে আঘাত হানার আশঙ্কা বেশি।" "আগামীকাল সকাল থেকে বাংলাদেশে এর প্রভাবে বৃষ্টি এবং ঝড়ো বাতাস থাকবে। আগামীকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে।" তিনি বলেন, "এর প্রভাবে ৫ থেকে ৬ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।" "ঘণ্টায় ১৭০ কিলোমিটার বাতাসের শক্তি হাজার কিলোমিটার ব্যাসের বিস্তার নিয়ে এ ঝড় শুক্রবার দুপুর নাগাদ উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করতে পারে।" আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড়ের ফণী নামটি কোথা থেকে এলো? যে কারণে ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে স্মৃতিতে সাইক্লোন সিডর শক্তিশালী হয়ে উঠেছে ঘূর্ণিঝড় ফণী, তাই মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারী সংকেত নামিয়ে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপিতে যা আছে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বর্তমানে পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী এখন চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১,০৬৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১,০২৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯১৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯২৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিমির মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিমি, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ সাত নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ছয় নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ফণীর সম্ভাব্য গতিপথ সারাদেশে নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএ-এর সচিব কাজি ওয়াকিল নেওয়াজ বিবিসি ব���ংলাকে জানিয়েছেন, সারাদেশে সকল নৌ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং উদ্ধারকারী জাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেইসাথে সারাদেশে সকল কর্মকর্তা কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে তিনি জানান। ভারতে আতঙ্ক, সতর্কতা বিবিসির সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় ফণী নিয়ে চরম আতঙ্ক তৈরি হয়েছে । আগামীকাল মধ্যরাতের দিকে ঝড়টি উপকূলে আঘাত করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তীর্থ শহর পুরী সহ আটটি জেলায় ব্যাপক সতর্কতা জারী করা হয়েছে। কলকাতা থেকে উড়িষ্যা হয়ে দক্ষিণ ভারত-গামী ৭০টিরও বেশি ট্রেনের সার্ভিস গতকাল থেকে বন্ধ হওয়া শুরু হয়েছে। পুরি এবং আশপাশের জেলাগুলো পর্যটকদের চলে যেতে বলা হয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনীর শত শত কর্মীকে উড়িষ্যায় পাঠানো হয়েছে। ব্যাপক শক্তি নিয়ে উড়িষ্যা উপকূলের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী। মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশে যে প্রস্তুতি এদিকে ঘূর্ণিঝড় ফণীকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বাংলাদেশের ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কেন্দ্র। দেশের সবগুলো প্রস্তুতি কেন্দ্রকে ইতোমধ্যেই সতর্ক করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচীর বরগুনা অঞ্চলের উপ-পরিচালক কিশোর কুমার সরদার বিবিসি বাংলাকে বুধবার বলেছেন, "আমাদের এলার্ট করা হয়েছে। কী কী করণীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।" "সে অনুযায়ী আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। স্বেচ্ছাসেবকদের বলা হয়েছে তারাও সতর্ক আছে।" তিনি বলেন, "পরিস্থিতির যদি অবনতি হয় তাহলে মাইকিং সহ লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে আনতে মাঠে নামার কাজও শুরু হবে।" বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: বিএনপি সংসদে কতটা বিরোধী ভূমিকা রাখতে পারবে? ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯: জার্সি নিয়ে অন্তরালে কী ঘটেছিল? মির্জা ফখরুলের শপথ না নেয়া: 'কৌশলটা' আসলে কী? মোদীর বিরুদ্ধে 'প্রতিবাদের প্রতীক' যে ছাত্রনেতা ব্যাপক শক্তি নিয়ে উড়িষ্যা উপকূলের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী। +text: ভারতে বেওয়ারিশ কুকুর বড় একটি উদ্বেগের কারণ পুলিশ বলছে, গত নভেম্বর থেকে সীতাপুর জেলায় একদল হিংস্র কুকুর ১২টি শিশু-কিশোরকে মেরে ফেলেছে। ওই হিংস্র কুকুর দলটিকে ধরতে ড্রোন ক্যামেরা, ন���ইট ভিশন বাইনোকুলার নিয়ে মাঠে নেমেছে ১৮টি বিশেষ দল। পুলিশ জানিয়েছে, সীতাপুরের গ্রামে গ্রামে কুকুরের ভয়ে বাচ্চাদের স্কুল যাওয়া বন্ধ হওয়ার জোগাড় হয়েছে। বাবা মায়েরা একা কোনও শিশুকেই বাইরে যেতে দিচ্ছেন না। শনিবার তালগাঁও এলাকার বছর দশেক বয়সের শিশু কাসিম মাঠে ছাগল চড়াতে গিয়েছিল। সেই সময়ে হামলা চালায় ওই হিংস্র কুকুরের দল। পরে তার মৃত্যু হয়। সেই দিনই বিহারীপুর গ্রামের কিশোর ইরফানের ওপরেও হামলা চালিয়েছিল ওই কুকুরের দল। এ নিয়ে মে মাসেই ছটি শিশু মারা গেছে সীতাপুর জেলায়। উত্তরপ্রদেশের সীতাপুরে নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত কুকুরের কামড়ে ১২টি শিশু কিশোর মারা গেছে জেলার গ্রামে গ্রামে ভয়টা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিল নভেম্বর মাস আগেই। কিন্তু মে মাসের শুরু থেকে কুকুর অন্তত ২০টি গ্রামে চরম আতঙ্ক তৈরি করেছে। পয়লা মে খৈরাবাদ এলাকায় কুকুরের হামলায় পর পর তিনটি শিশু মারা যায় শুক্রবার মারা যায় আরও দুটি বাচ্চা। শনিবার মারা যায় শিশু কাসিম। নভেম্বর থেকে এ নিয়ে অন্তত ১২টি শিশু কিশোর ওই কুকুরদের দলটির হামলার শিকার হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। যদিও স্থানীয় অনেক মানুষ বলছেন, নিহতের সংখ্যা ১৭। কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছে আরও অনেকে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে বাবা মায়েরা শিশুদের একা বাড়ির বাইরে বেরতে দিচ্ছেন না। এমন কি স্কুলগুলিতেও উপস্থিতির হার কমে গেছে অস্বাভাবিক হারে। গ্রামে গ্রামে চলছে লাঠি নিয়ে পাহারা। শেষমেশ অবশ্য প্রশাসনের টনক নড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করার পরে পুলিশ প্রশাসন তড়িঘড়ি কুকুর ধরতে মাঠে নেমেছে। আরও পড়ুন: ক্ষতিপূরণের এক কোটি টাকা কি পাবে রাজীবের পরিবার? থাইল্যান্ডে জলাতঙ্ক: ১ কোটি কুকুর-বিড়ালের টিকা রাস্তার যে কুকুর মানুষের আগেই মহাশূন্যে গিয়েছিল সীতাপুর জেলা যে পুলিশ কর্মকর্তার অধীনে, সেই লক্ষ্ণৌ রেঞ্জের ইন্সপেক্টর জেনারেল সুজিত পাণ্ডে বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "আমরা সোমবার থেকে ১৮টি দল কাজে নামিয়েছি। প্রতিটি দলে পুলিশ যেমন আছে, তেমনই বনবিভাগ, ম্যাজিস্ট্রেট, বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরাও আছেন। রয়েছেন বিশেষজ্ঞরাও।" শুধু বিশেষজ্ঞ আর বনবিভাগের কর্মীদের নিয়েই সন্তুষ্ট নয় পুলিশ। কুকুরদের গতিবিধি আর অবস্থান যাতে সঠিক ভাবে চিহ্নিত করা যায��, তার জন্য দুটি ড্রোন ক্যামেরা আর বেশ কয়েকটি নাইট ভিশন বাইনোকুলারও দেওয়া হয়েছে কুকুর-ধরার ওই দলগুলিকে। মি. পান্ডে বলছিলেন, "একদিনের মধ্যেই ওই হিংস্র কুকুরদের দলটির বেশীরভাগকেই ধরা গেছে বলেই মঙ্গলবার দুপুরে জানতে পেরেছি। আরও গোটা তিন চারেক কুকুর সম্ভবত ঘুরে বেড়াচ্ছে।" হঠাৎ করে ওই কুকুরদের দলটির হিংস্র হয়ে ওঠার নানা কারণ থাকতে পারে, যার মধ্যে খাবারের অভাব একটা বড় কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। কেরালায় পিটিয়ে মারার পর বেওয়ারিশ কয়েকটি কুকুরের মরদেহ নিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ। কেরালায় ২০১৫-১৬ সালে এক লক্ষ মানুষ রাস্তার কুকুরদের কামড় খেয়েছে। মারা গেছে অনেকে। (ফাইল ফটো) দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্য কেরালাতেও রাস্তার কুকুরদের কামড় একটা বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে গত কয়েক বছর ধরে। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও চলছে। আদালতে জমা দেওয়া হিসাব অনুযায়ী কেরালায় ২০১৫-১৬ সালে এক লক্ষ মানুষ রাস্তার কুকুরদের কামড় খেয়েছেন। মারা গেছেন অনেকে। এই সমস্যা সমাধানে যখন স্থানীয় মানুষরা রাস্তার কুকুরদের ধরে মেরে ফেলতে শুরু করেন, তখন আবার নানা পশু প্রেমী সংগঠন তার বিরোধিতায় নেমেছে। তারা বলছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পশু জন্ম নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা অনুযায়ী রাস্তার কুকুরদের মেরে না ফেলে তাদের নির্বীজ-করণ করার কথা। এ সংক্রান্ত একটি মামলায় কেরালা হাইকোর্ট এর আগে মন্তব্য করেছিল যে মানুষের জীবনের দাম একটি রাস্তার কুকুরের প্রাণের দাম থেকে অনেক বেশী। ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের একটি জেলায় গত এক সপ্তাহে অন্তত ছয়টি শিশু বেওয়ারিশ হিংস্র কুকুরের কামড়ে মারা যাওয়ার পর সেগুলোকে ধরতে নজিরবিহীন পুলিশি তৎপরতা শুরু হয়েছে। +text: জেট এয়ারওয়েজ বলছে এই প্রথম তাদের ফ্লাইটে কোনো শিশু জন্ম নিলো। সৌদি আরব থেকে ভারত যাবার পথে এক শিশু জন্ম নেয়ায় তাকে আজীবন বিনামূল্যে আকাশ ভ্রমণের সুবিধা দিয়েছে জেট এয়ারওয়েজ। তবে শিশুটি সহজে পৃথিবীতে আসেনি। নির্ধারিত সময়ের আগে শিশুটির মায়ের প্রসব বেদনা শুরু হয়। বিমানটি তখন ৩৫ হাজার ফুট উঁচুতে, হঠাৎ করেই গর্ভবতী এক নারীর ব্যথা শুরু হলো। নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রসব বেদনা শুরু হলো ওই নারীর। কিন্তু বিমানে নেই কোনো ডাক্তার। বিমানের এক ক্রু ও এক যাত্রী নারীটিকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলেন। এরা দুজনেই ছিলেন প্রশিক্ষিত নার্স। তাদের সাহায্যেই প্রায় ৩৫ হাজার ফুট (১০ হাজার ৬৮৮ মিটার) উঁচুতে মধ্য আকাশে জন্ম নিলো এক শিশু। জেট এয়ারওয়েজের বোয়িং ৭৩৭ মুম্বাই পৌঁছানোর পরপরই মা ও শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এয়ারলাইন্সের এক কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, মা ও শিশু দুজনেই এখন সুস্থ আছে। 'সফলভাবে একটি ছেলের শিশুকে পৃথিবীতে আনতে প্রসবকাজে সহায়তার জন্য' বিমানের ওই যাত্রী ও কেবিন ক্রুকে বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছে জেট এয়ারওয়েজ। "জীবন বাঁচানোর কাজে কেবিন ক্রুদের যে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে তা জেট এয়ারওয়েজ আজ প্রত্যক্ষ করলো" এক বিবৃতিতে বলে কোম্পানিটি। এই প্রথম জেট এয়ারওয়েজের কোনো ফ্লাইটে শিশু জন্ম নেয়ার ঘটনা ঘটলো। এর আগে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ৪২ হাজার ফুট উঁচুতে এক শিশুর জন্ম হয়েছিল। ৪২ হাজার ফুট উঁচুতে টার্কিশ এয়ারলাইন্সে জন্ম নেয়া শিশুটিসহ কেবিন ক্রুরা। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের এক বিবৃতিতে বলা হয়, নাফি দায়াবি নামে একজন গর্ভবতী নারী (গর্ভধারণের ২৮ সপ্তাহ চলছিল) বিমানে ওঠার পর তার প্রসব বেদনা শুরু হয়। এরপর তাকে প্রসবকাজে সহায়তা করেন কেবিন ক্রু এবং কয়েকজন যাত্রী। জন্ম হয় কন্যাশিশু 'কাদিজু'র। নবজাতক ও মা দুজনেই সুস্থ ছিলেন। বেশিরভাগ এয়ারলাইন্সের নিয়ম অনুযায়ী, গর্ভবতী নারীদের গর্ভধারণের ৩৬ সপ্তাহ হবার আগ পর্যন্ত তাদের বিমানে চড়তে কোনো বাধা নেই। তবে এক্ষেত্রে গর্ভবতী নারীদের ডাক্তারের স্বাক্ষরসহ একটি চিঠি দেখাতে হয় যে তাদের গর্ভধারণের কত সপ্তাহ পার হয়েছে। আরো পড়ুন: লন্ডনে মসজিদের কাছে সন্ত্রাসী হামলা: কী জানা যাচ্ছে? কেন কাতারের পাশে দাঁড়িয়েছে তুরস্ক? ভারতের এমন শোচনীয় পরাজয়ের কারণ কী? ভারতের বেসরকারি এয়ারলাইন্স জেট এয়ারওয়েজে ঘটেছে এমন ঘটনা। +text: কলকাতায় বিসিআইএম মোটর র‍্যালির সূচনা। ২০১৩ দিল্লিতে সরকারের ঘনিষ্ঠ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বেল্ট রোডের অন্যতম প্রধান অংশ যেহেতু বিতর্কিত কাশ্মীর ভূখন্ডের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে তাই সেখানে ভারতের আপত্তি থাকবেই। আর বিসিআইএম যেহেতু বেল্ট রোডের চেয়ে অনেক বেশি পুরনো প্রকল্প - তাই সেটিকে নিয়ে আলাদাভাবে এগোনো দরকার বলেই তারা যুক্তি দিচ্ছেন। পাশাপাশি বেল্ট রোড প্রকল্পের অর্থায়ন যাতে বাংলাদেশকে কোনও ঋণের জালে ��ড়িয়ে না-ফেলে সে দিকেও ঢাকার সতর্ক থাকা দরকার বলে দিল্লির অভিমত। এই মুহুর্তে ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম - দুই সীমান্তে চলছে চীনের বেল্ট রোড ইনিশিয়েটিভের দুটি প্রকল্পের কাজ। বার্লিন-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেরিকস-এর প্রকাশিত বেল্ট রোড মানচিত্র একদিকে চায়না-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর বা সিপেক, যা বিতর্কিত কাশ্মীরের ওপর দিয়ে যাচ্ছে বলে ভারত এই প্রকল্পের তীব্র বিরোধিতা করছে। অন্য দিকে পূর্ব সীমান্তের বিসিআইএম নিয়ে ভারতের বিশেষ আপত্তি না-থাকলেও এটাকেও যদি বেল্ট রোডের অংশ হিসেবে দেখা হয় তাহলে ওই একই কারণে দিল্লির পক্ষে তা মেনে নেওয়া মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। এই পটভূমিতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিকে পরামর্শ দিয়েছেন, দ্বিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিক ফোরামে আলোচনার মাধ্যমে বেজিংয়ের সঙ্গে মতবিরোধ মিটিয়ে নিতে। কিন্তু ভারত কি সেই প্রস্তাব মানতে প্রস্তুত? সাবেক ভারতীয় কূটনীতিক অশোক কান্থা বছরদুয়েক আগেও চীনে ভারতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন, এখন তিনি দিল্লিতে সরকারি সাহায্যপুষ্ট গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব চাইনিজ স্টাডিজের অধিকর্তা। দিল্লির ইনস্টিটিউট অব চাইনিজ স্টাডিজের অধিকর্তা অশোক কে কান্থা তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "আমি কাউকে কোনও উপদেশ দিতে চাই না - কিন্তু এটুকু অবশ্যই বলব যে বিসিআইএম নিয়ে কথাবার্তা কিন্তু বেল্ট রোডের অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে।" "ফলে আমি মনে করি না অন্য কোনও প্রকল্পের সঙ্গে বিসিআইএমকে যুক্ত করে দেখার অবকাশ আছে - কারণ এটা নিয়ে সংশ্লিষ্ট চারটে দেশের আলোচনা চলছে অনেক অনেক আগে থেকে!" কিন্তু এই মুহুর্তে চীন বিসিআইএম-কেও বেল্ট রোডের অংশ হিসেবেই দেখাতে চায় বলে একটা ধারণা সৃষ্টি হয়েছে, যদিও তারা বিষয়টা পুরো স্পষ্ট করেনি। এই প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনা যেমনটা চাইছেন, অর্থাৎ সিপেক নিয়ে ভারত আপত্তি শিথিল করুক, তার কি কোনও সম্ভাবনা আছে? দিল্লিতে কানেক্টিভিটি বিশেষজ্ঞ প্রবীর দে বেল্ট রোড নিয়ে বহুদিন গবেষণা করছেন, তিনি কিন্তু খুব একটা আশাবাদী নন। কানেক্টিভিটি বিশেষজ্ঞ প্রবীর দে ড: দে বলছিলেন, "দেখুন একটা দেশের অখন্ডতা বা সার্বভৌমত্বের দাবি সবার আগে। তা ছাড়া ভারতে সামনেই নির্বাচন আসছে, ফলে এখুনি বিষয়টা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হবে বা কেউ বিবৃতি দেবে বলেও মনে হয় না। "তবে বিসিআইএম করিডর যে বাংলাদেশ এবং ভারত���র পূর্ব বা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য অনেক সুবিধা বয়ে আনবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।" "সে কারণেই আমি মনে করি দিল্লিতে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাদের বিসিআইএম নিয়ে দ্রুত একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে - তা সে সিপেকে আমাদের অবস্থান যা-ই হোক না কেন!" "কোনও একটা মেকানিজমের মাধ্যমে এই করিডরের কাজ এগিয়ে নিতেই হবে। বিসিআইএমের যাবতীয় স্টাডিও শেষ, এখন চার দেশের একটা বৈঠক ডেকে সেই স্টাডি অনুমোদন করাতে হবে - যে বৈঠক ডাকার দায়িত্ব মিয়ানমারের।" দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও চীন-ভারত সম্পর্কের বিশেষজ্ঞ ড: শ্রীমতি চক্রবর্তীও মনে করেন বিসিআইএম নিয়ে ভারতের উৎসাহ বাংলাদেশের চেয়ে কিছু কম নয় - তবে প্রকল্পটাকে বেল্ট রোড থেকে পৃথকভাবে দেখলে তবেই সমস্যা মেটে। তার কথায়, "বিসিআইএমের চারটে দেশের মধ্যে সবচেয়ে আগ্রহ দেখা গেছে চীনের।" প্রধানমন্ত্রী হাসিনা চান বেল্ট রোড নিয়ে ভারত তাদের আপত্তি চীনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নিক "মিয়ানমারের উৎসাহ একটু কম ছিল, বাংলাদেশও বলব একটু ইর‍্যাটিক ছিল। ভারতও অবশ্য কখনও কখনও মন্থরতা দেখিয়েছে।" "তবু আমি মনে করি বিসিআইএম নিয়ে ভারতের আপত্তির কিছুই নেই। আমাদের যাবতীয় আপত্তি সিপেক নিয়ে - আর সেটা একটা বিতর্কিত এলাকা দিয়ে যাচ্ছে বলে।" "এখন সেই জায়গাকে পাশ কাটানো হলে, কিংবা দুটো প্রকল্পকে আলাদা করে দেখা হলেই তো আর অসুবিধার কিছু থাকে না" বলছেন অধ্যাপক চক্রবর্তী। এদিকে বিআরআই সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দেশকে দীর্ঘমেয়াদী ঋণের জালে জড়িয়ে দিচ্ছে, সম্প্রতি এধরনের সন্দেহ তৈরি হয়েছে শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ বা এমন কী পাকিস্তানেও। প্রবীর দে বলছিলেন, দিল্লিরও বিশ্বাস বাংলাদেশকে এ ব্যাপারে খুব সাবধানে পা ফেলতে হবে। অশোক কান্থার সঙ্গে আলোচনারত প্রধানমন্ত্রী মোদী। ফাইল ছবি "ঢাকাকে আসলে খুবই সতর্কভাবে দেখতে হবে চীন থেকে তারা ঠিক কী নেবে।" "এখানে কিন্তু কোনও 'ফ্রি লাঞ্চ' নেই, মানে বিনি পয়সায় কেউ কাউকে কিছু অবকাঠামো গড়ে দিচ্ছে না", বলছিলেন তিনি। "চীনের ঋণে অনেক জটিল শর্তও আছে। বাংলাদেশের ডেট মার্জিন এমনিতেই অনেক বেশি, এখন বিআরআই প্রকল্পের জন্য সেটা আরও বাড়লে রাজস্ব উৎপাদনের জন্য তাদের আরও অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হবে।" আসলে বাংলাদেশের মতো ভারতও বিশ্বাস করে, এই অঞ্চলে বিসিআইএম করিডরের দ্রুত বাস্তবায়ন দরকার। কিন্তু সুদূর কাশ্মীরের ছায়া পড়াতেই প্রকল্পটি ভারতের চোখে সন্দেহজনক হয়ে উঠেছে - আর তারা এখন বাংলাদেশকেও বার্তা দিতে চাইছে বিষয়টিকে বেল্ট রোড থেকে আলাদা করে দেখলেই এর রূপায়নে কোনও সমস্যা থাকে না। চীনের বহুল আলোচিত বেল্ট রোড ইনিশিয়েটিভ বা বিআরএই প্রকল্প থেকে সম্পূর্ণ আলাদাভাবে দেখা হলে তবেই বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার বা বিসিআইএম আর্থিক করিডরের ভবিষ্যৎ আছে বলে ভারত মনে করছে। +text: টসে জিতে ব্যাটিং এর সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ দলের ২০০৬ সালের পর টেস্টে প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হচ্ছে দেশ দুটি। বাংলাদেশের হয়ে দুই বছর পর সাদা পোশাকে মাঠে নামছেন নাসির হোসেন। তবে একাদশে জায়গা হয়নি মুমিনুল হকের।তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান নামছেন নিজেদের ৫০তম টেস্ট খেলতে। বাংলাদেশ দলে রয়েছেন তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, শফিউল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান। আর অস্ট্রেলিয়া দলে রয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার, ম্যাট রেনশ, স্টিভেন স্মিথ (অধিনায়ক), উসমান খাজা, পিটার হ্যান্ডসকম্ব, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, ম্যাথু ওয়েড, অ্যাশটন অ্যাগার, প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজলউড, নাথান লায়ন। আরো পড়ুন: রোহিঙ্গাদের আবার বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা টেক্সাসে প্রবল বন্যার আশঙ্কা,সরানো হচ্ছে বন্দীদের ফরাসী প্রেসিডেন্টের মেক-আপ খরচ ২৬ হাজার ইউরো নিরাপত্তার কারন দেখিয়ে এই সফর দুই বছর আগে বাতিল করেছিল অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের স্কোয়াডে যারা আছেন তাদের কেউই কোনোদিন একে অপরের মুখোমুখি হন নি। +text: একুশ বছরের একজন ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ এবং সে একাই হামলা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে টেক্সাসের মেয়র গ্রেগ অ্যাবট এই ঘটনাকে সেখানকার 'ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ দিন' বলে বর্ণনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র মেক্সিকো সীমান্তের কয়েক মাইল দূরত্বে সিয়েলো ভিস্টা মলের কাছে ওয়ালমার্ট স্টোরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। একুশ বছরের একজন ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ এবং সে একাই হামলা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যে পুলিশ সদস্যরা তাকে আটক করেছেন, তাদের প্রশংসা করেছেন মেয়র গ্রেগ অ্যাবট। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, সন্দেহভাজন ব্যক্তির নাম প্যাট্রিক ক্রুসিয়াস, সে ডালাস এলাকার একজন বাসিন্দা। সিসিটিভি ফুটেজে একজন ব্যক্তিকে বন্দুকধারী হিসাবে দেখা যাচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম বলছে, গাঢ় টি-শার্ট পড়া স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র হাতে ব্যক্তি হামলা করেছে। আরো পড়ুন: ২০১৮'তে হয়েছে সবচেয়ে বেশি স্কুল হামলা জাসিন্ডা আরডের্ন: ভালবাসা দিয়ে 'হৃদয় জয়' করলেন যিনি 'আমরা ভাবিনি এই লোকটা আমাদের মারতে এসেছে' সন্দেহভাজন হামলাকারীর ছবি প্রকাশ করা হয়েছে মার্কিন গণমাধ্যমে যা ঘটেছে বন্দুকধারীর প্রথম হামলার তথ্য পাওয়া যায় স্থানীয় সময় সকাল ১০টায়। পুলিশ বলছে, হামলার সময় ওয়ালমার্টের ওই দোকানটিতে ক্রেতাদের প্রচণ্ড ভিড় ছিল। পুলিশের মুখপাত্র সার্জেন্ট রবার্ট গোমেজ বলেছেন, একমাত্র সন্দেহজনক ব্যক্তি হচ্ছেন একুশ বছর বয়সের একজন শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি। তবে তাকে আটক করার সময় পুলিশের কোন কর্মকর্তাকে গুলি করতে হয়নি। পুরো এলাকাকে নিরাপদ করে তোলা সম্ভব হয়েছে বলে তিনি বলছেন। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: কাশ্মীরে চরম আতঙ্ক: দলে দলে পালাচ্ছে লোকজন ঢাকায় এডিস মশা নিধনে কেন এই ব্যর্থতা গরুর দুধে অ্যান্টিবায়োটিক আসে কীভাবে অভিভাবকত্ব আইন পরিবর্তনে সৌদি নারীদের কী লাভ? হামলার সময় ওয়ালমার্টে অনেক মানুষ কেনাকাটা করতে এসেছিলেন হামলার সময় সেখানে উপস্থিত একজন ব্যক্তি গুলিবর্ষণের বর্ণনা দিয়েছেন। সিবিএস নিউজকে তিনি বলেছেন, ''সেখানে কর্মীরা ছিল, তারা ভেতরে এসে বলছিল যে, তারা কয়েকটি গুলির শব্দ শুনেছে। তখন মানুষজন সবাই কাভার নেয়ার জন্য দোকানটির ভেতর ছুটে আসছিল। আমি শান্ত থাকার চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু ভেতরে ভেতরে আমি ভেঙ্গে পড়ছিলাম।'' এল পাসোর মেয়র গ্রেগ অ্যাবোট বলেছেন,''এরকম দুঃখজনক ঘটনা এখানে কখনো ঘটেনি, কখনো ভাবিনি এল পাসোতে এমনটা কখনো ঘটবে। এটা আমাদের দুঃখ দিয়েছে।'' যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ওই এলাকা থেকে যেসব খবর আসছে, তা খুব খারাপ, অনেকে মারা গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ২০ জন নিহত এবং ২৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। এল পাসো শহরে ওয়ালমার্টের একটি দোকানে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। +text: চম্পাওয়াত ভারত-নেপাল সীমান্তের 'বর্ডার ড্যাম' সেখানে নো-ম্যানস ল্যান্ডে খুঁটি পুঁতে নেপালিরা জমি কব্জা করার চেষ্টা করছে, ভারত এই অভিযোগ তোলার পর সীমা��্তবর্তী এলাকায় চরম উত্তেজনাও সৃষ্টি হয়েছে। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ওই এলাকা পরিদর্শনে গেলে তাদের তীব্র ভারত-বিরোধী বিক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে অবশ্য বিবিসি বাংলাকে জানানো হয়েছে, শীঘ্রই এই বিরোধের নিষ্পত্তি হয়ে যাবে বলে তারা আশা করছেন। এদিকে টনকপুরের স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, যে নেপালিরা ভারতের দিকে অস্থায়ীভাবে বাস করে ছোটখাটো ব্যবসা করতেন তারাও উত্তেজনার জেরে পাট গুটিয়ে নিজেদের দেশে ফিরে গেছেন। ভারতের উত্তরাখন্ড রাজ্যের চম্পাবত জেলায় নেপাল সীমান্ত ঘেঁষা একটি বাণিজ্য শহর টনকপুর। শিথিল সীমান্তের সুযোগ নিয়ে এ অঞ্চলে দুদেশের লোকজনের যাতায়াতও প্রায় অবাধ। নেপালে ছাত্রদের ভারত-বিরোধী বিক্ষোভ কিন্তু গত বুধবার সীমান্তের ব্রহ্মদেব নামে একটি এলাকায় নেপালিরা বেশ কিছু কংক্রিট ও কাঠের খুঁটি পুঁতে এবং অনেক গাছপালা লাগিয়ে বেশ বড় একটি এলাকা ঘিরে ফেলার চেষ্টা করে – যেটা নো-ম্যানস ল্যান্ডের ভেতর পড়ছে বলে ভারতের অভিযোগ। চম্পাওয়াতের পুলিশ সুপার লোকেশ্বর সিং বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "সীমান্তের মিসিং পিলার নাম্বার ৮১১, অর্থাৎ যেখানে কোনও দেশেরই সীমান্ত পিলার নেই, সেখানে ওরা কিছু প্ল্যান্টেশন করেছে ও বেড়া বানানোর প্রস্তুতি নিয়েছে। জায়গাটা নো ম্যানস ল্যান্ডে পড়ে।" "আজ রবিবার সকালেও নেপালের কর্মকর্তারা জায়গাটি পরিদর্শন করেছেন, তারপর আমাদের সঙ্গে তাদের আলোচনায় বসার কথা আছে।" তবে ঘটনা হল, ভারতের যে সশস্ত্র সীমা বল বা এসএসবি নেপাল সীমান্ত পাহারা দিয়ে থাকে তারা এর আগে দু-দুবার ব্রহ্মদেবে গিয়ে নেপালিদের বিক্ষোভ ও ভারত-বিরোধী স্লোগানের মুখে পড়েছে – খুঁটি বিরোধের এখনও কোনও সমাধান হয়নি। কিন্তু ভারত কি বিষয়টি নিয়ে নেপালের কাছে কোনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানিয়েছে? নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলি সম্পর্কিত খবর: নদীবাঁধ আর সেচের জল নিয়ে নেপাল-ভুটানও এবার ভারতের সঙ্গে সংঘাতে বিতর্কিত ভূখণ্ড মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করে নেপালের সংবিধান সংশোধন ভারত-নেপালের কালাপানি বিরোধ কি চীনের উস্কানিতেই পুলিশ প্রধান মি সিং বিবিসিকে জবাবে বলছিলেন, "অবশ্যই অভিযোগ জানানো হয়েছে। আমরা প্রথম থেকেই নেপালের স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথাবার্তা বলছি, দিল্লিতেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ��ে অবহিত করা হয়েছে।" খুব শিগগিরি বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধান করা সম্ভব হবে বলেও তিনি আশাবাদী – যদিও টনকপুরের স্থানীয় বাসিন্দারা অতটা আশ্বস্ত বোধ করতে পারছেন না। শহরের বস্ত্র ব্যবসায়ী ভিনিত জোশী বিবিসিকে বলছিলেন, "দেখুন ওরা সীমান্তের জমি অন্যায়ভাবে দখল করে রেখেছে – নো ম্যানস ল্যান্ডের ভেতর প্রায় ২৫০ গজ ভেতরে ঢুকে পড়েছে।" "আমাদের বাহিনী ওখানে গিয়ে বোঝানোরও চেষ্টা করেছে, কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি।" "শহরের অবস্থা এখনও মোটামুটি ঠিকই আছে, কিন্তু সীমান্ত লাগোয়া গ্রামগুলোতে পরিস্থিতি থমথমে হয়ে উঠছে বলেই আমরা খবর পাচ্ছি।" অথচ টনকপুরে এতদিন নেপালি ও ভারতীয়রা পাশাপাশিই ব্যবসা করে এসেছেন, সীমান্ত পারাপারেও কখনও লাগেনি পাসপোর্ট-ভিসা। কিন্তু আড়াই মাস আগে কালাপানি নিয়ে দুদেশের সীমান্ত বিরোধ শুরু হওয়ার পর থেকেই অবস্থা পাল্টাতে শুরু করে। ভিনিত জোশী জানাচ্ছেন, "যবে থেকে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে. পি. ওলি ভারত-বিরোধী ভাষণ দিতে শুরু করেছেন, তখন থেকেই এখানে বসবাসকারী নেপালিরা পাততাড়ি গোটাতে শুরু করে দেন।" "তারা অনেকেই এখানে মোমো বা চাউমিনের দোকান চালাতেন। কিন্তু তারা আর এখানে নিরাপদ বোধ করছিলেন না, গন্ডগোল আরও বাড়তে পারে এই আশঙ্কায় তারা নেপাল ফিরতে শুরু করে দেন।" কালাপানি, লিপুলেখ ও লিম্পিয়াধুরা – এই তিনটি বিতর্কিত অঞ্চলকে নিজেদের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করে নেপাল গত মাসে যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা নিয়ে দিল্লি ও কাঠমান্ডুর কূটনৈতিক সম্পর্কে এর মধ্যেই ফাটল ধরেছে। এখন সেই কালাপানি থেকে সীমান্ত বরাবর প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে ব্রহ্মদেব এলাকা নিয়েও নেপাল অনড় অবস্থান নেয় না কি ভারতের সঙ্গে কোনও আপষ রফায় আসে সেটাই দেখার বিষয় হবে। গত বেশ কিছুদিন ধরে চলা ভারত-নেপাল সীমান্ত বিরোধের মধ্যেই নতুন করে সীমান্তবর্তী টনকপুর শহরের কাছে এই বিরোধ আবার মাথাচাড়া দিয়েছে। +text: হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের ভিড় অন্যান্য জেলার তুলনায় বরিশালে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হওয়ায় শুধু সেখানে কারণ অনুসন্ধানের জন্য এখন একটি জরিপ চালানো হচ্ছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, রাজধানী থেকে ডেঙ্গুর বিস্তার হয়েছে, এটা ধরে নিয়েই জেলাগুলোতে এখন চিকিৎসার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, জেলা উপজেলা পর্যায়ে ডেঙ্গুর উৎস স্থানীয় এডিস মশা কিনা, তা চিহ্নিত করা না হলে এর প্রকোপ কমবে না। সরকারি হিসাবে সারাদেশে এপর্যন্ত ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬২ হাজার ছাড়িয়েছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ১১৭৯ জন ভর্তি হয়েছেন গত ২৪ ঘন্টায়। সরকারি এই হিসাবে ঢাকার বাইরে জেলা উপজেলার হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তির সংখ্যা বেশি। ঢাকায় যখন ব্যাপকহারে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব, এরমধ্যেই এই অগাষ্ট মাসের মাঝামাঝি ঈদকে কেন্দ্র করে লাখ লাখ মানুষ গ্রামে গিয়েছিলেন। ফলে ঢাকা থেকেই দেশের প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়িয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ ধারণা করছে। ঈদের সময় পার হওয়ার অনেক পরে এসেও জেলা উপজেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু এর উৎস চিহ্নিত করার জন্য সরকারের সার্বিক কোন উদ্যোগ এখনও দৃশ্যমান নয়। একটি হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এক শিশুর পাশে তার মা আরও পড়তে পারেন: কাশ্মীরে ঢুকতেই দেয়া হলো না রাহুল গান্ধীকে 'মহাকাশে প্রথম অপরাধ' অভিযোগ তদন্ত করছে নাসা চীনের ওপর কতটা ভরসা করতে পারে বাংলাদেশ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেছেন, ঢাকার-চট্টগ্রামের বাইরে জেলাগুলোর মধ্যে বরিশালে যেহেতু ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি, সেজন্য সেখানে জরিপ চালানো হচ্ছে। অন্য এলাকাগুলোতে বিশেষজ্ঞ দিয়ে পূর্ণাঙ্গ জরিপ না হলেও স্থানীয় পর্যায় থেকে আসা তথ্য বিশ্লেষণ করে তারা একটা ধারণা করতে পারছেন। তিনি বলেছেন, "বিভিন্ন এলাকার তথ্য থেকে আমরা দেখেছি, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যার বৃদ্ধিটা ছিল, ঈদের প্রস্তুতি থেকে ঈদের সময় পর্যন্ত। ঢাকায় কমছিল, ঢাকার বাইরে বাড়ছিল। এটা ছিল একেবারে চোখে পড়ার মতো। তাতে মনে হয়েছে, এটা ঢাকা থেকে গেছে, এমন সংখ্যাটাই বেশি।" "আমরা যে ট্রাভেল হিস্ট্রি বিশ্লেষণ করেছি, তাতে দেখেছি, ৭০ভাগই বলেছেন যে, ঢাকা থেকে গেছেন অথবা ডেঙ্গু জ্বর হওয়ার দু'সপ্তাহের মদ্যে তারা ঢাকা এসেছিলেন। এরমদ্যে কিছু বলছেন না যে ঢাকায় এসেছিলেন। সেজন্য আমাদের মনে হচ্ছে, লোকাল ট্রান্সিশন হতে পারে।" কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছেন, জেলা উপজেলা পর্যায়েও হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগের পর্যাপ্ত এবং যথাযথ চিকিৎসা দেয়ার ব্যাপারে জোর দেয়া হয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা বলেছেন, স���রাদেশেই এডিস মশা যেহেতু পাওয়া গেছে, ফলে সেই এডিস এখন ডেঙ্গুর বাহক হয়ে থাকতে পারে। এই বাহক চিহ্নিত করে তা নিয়ন্ত্রণের বিষয়কেও গুরুত্ব দিতে হবে। তা না হলে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমানো সম্ভব নয় বলে তারা মনে করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কবিরুল বাশার মশা নিয়ে কাজ করেন, তিনি বলছিলেন, "এডিস মশার ঘনত্ব কিন্তু সব শহরগুলোতেই ছিল। যেহেতু এডিস মশার ঘনত্ব ছিল, আর সে যদি একজন রোগী পেয়ে যায়, তখন কিন্তু ভাইরাস ট্রান্সমিশন প্রক্রিয়াটা শুরু হয়।সেভাবেই প্রত্যেকটা জেলাতেই এডিসে ভাইরাস ট্রান্সমিশনটা শুরু হয়েছে এবং মশা যেহেতু আছে,সেই ট্রান্সমিশনটা চলছে।" এখন ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা কোনদিন বাড়ছে, কোনদিন কমছে। তবে প্রতিদিন গড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১১শ'র বেশি থাকছে। আগের বছরগুলো রেকর্ডে অগাষ্ট এবং সেপ্টেম্বর মাসেই ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংক্যা বেশি থাকে অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলছিলেন, পরিস্থিতি একটা জায়গায় এসে থেমেছে বলে তারা মনে করছেন। "এটা আসলে বৃষ্টিপাতের ওপর নির্ভর করে। এরসাথে নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা কি নেয়া হচ্ছে, তার ওপর রোগীর কমা বাড়াটা নির্ভর করে। কিন্তু এবার পুরো অগাষ্ট মাসজুড়েই দেখতে পেয়েছি, রোগী মোটামোটি স্থিতিশীল।" "এখন পর্যন্ত আমাদের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, এটা স্থিতি অবস্থায় আছে। আর কিছুদিন হয়তো আরেকটু এরকম থেকে আস্তে আস্তে এটা নামতে শুরু করবে।" কর্মকর্তারা বলছেন, এবার ডেঙ্গু নিয়ে উদ্বেগ বেশি হওয়ায় মানুষও অনেক সচেতন হয়েছে। সেটাকে তারা পরিস্থিতি সামাল দেয়ার ক্ষেত্রে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। বাংলাদেশে ঢাকার বাইরে জেলাগুলোতে ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লেও এর বাহক স্থানীয় এডিস মশা কিনা, সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি। +text: ঢাকার মানিক মিয়া অ্যভিনিউতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন ছাত্রীরা। পুলিশ প্রশাসন এসব অপ্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষার্থীদের 'পূর্ণ বয়স্ক মানুষ ও অপরাধী' হিসেবে বিবেচনা করে তাদের প্রতি কঠোর আচরণ করছে বলে তারা বলছেন। আইন ও শালিস কেন্দ্রের শিশু অধিকার ইউনিটের টিম লিডার মো. মকসুদ মালেক বলছিলেন, বাংলাদেশে শিশু অধিকার আইন রয়েছে। সেই আইনের ধারায় অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোর-কিশোরীদের সুরক্ষাকে নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ শুরু থেকেই এদের আইনভঙ্গকারী হিসেবে বিবেচন�� করে আসছে। এই দৃষ্টিভঙ্গির কারণে পুলিশ আক্রমণাত্মক ভূমিকা পালন করছে বলে তিনি বলেন। গত রোববার ঢাকায় একই কোম্পানির দুটি বাসের মধ্যে প্রতিযোগিতার সময় সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর বাস তুলে দেয় এক চালক। ঐ ঘটনায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী দিয়া খানম মীম এবং দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম নিহত হয়। এতে আহত হয় অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী। খবর পেয়ে ঐ কলেজের শিক্ষার্থীরা বাইরে বেরিয়ে এসে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষোভকারীদের ঘিরে পুলিশের সতর্ক প্রহরা। আরো পড়তে পারেন: শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে সমর্থন অভিভাবকদের সড়ক দুর্ঘটনা: যে কারণে ড্রাইভাররা এত বেপরোয়া 'সদা সত্য কথা বলিবে'- এই মন্ত্র কি সবসময় সঠিক? এই বিক্ষোভের মুখে সোমবার বিকেলে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর জল-কামান ব্যবহার করে এবং সাঁজোয়া গাড়ি ব্যবহার করে সড়ক অবরোধকারীদের ধাওয়া করে। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সাথে ছাত্রদের ধস্তাধস্তির দৃশ্য দেখা যায়। এক ঘটনায় এক পুলিশ কর্মকর্তাকে দেখা যায় এক ছাত্রের কলার ধরে আছে। তবে বিবিসির একজন সংবাদদাতা, যিনি শহরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখেছেন, তিনি বলেছেন, সোমবারের পুলিশকে বেশ মারমুখী দেখা গেলেও মঙ্গলবার ও বুধবার তাদের সংযত দেখা গেছে। বাংলাদেশে নিরাপদ সড়কের দাবীতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন: কে কীভাবে দেখছেন? "এসব ঘটনায় কিশোর-কিশোরীদের মনে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে সেটি বিবেচনার মধ্যে রাখতে হবে, বলছেন আইন ও শালিস কেন্দ্রের মো. মাকসুদ মালেক, "এরা কোনভাবেই অপরাধ করেনি, সেকারণে তাদের প্রতি সাধারণ আইনের ধারাগুলো প্রয়োগ করা উচিত হবে না।" এদের বিচার করার প্রয়োজন হলেও সেটা প্রচলিত আদালতে করা যাবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন। "একটা কথা মনে রাখতে হবে এদের দুজন সহপাঠী বাসে চাপা পড়ে নিহত হয়েছে। ফুটপাথে দাড়িয়ে তারা যদি নিরাপদ বোধ না করেন, সেই কথাটি কী তারা বলতে পারবে না?" বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের সাথে ব্যবহারের ক্ষেত্রে কী আদেশ দেয়া হয়েছে সে সম্পর্কে পুলিশ বিভাগের কোন মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। রাস্তার একিদিকে বিক্ষোভ। অন্যদিকে, অনেকেই বুধবার হেঁটে অফিসে যান। তবে এই প্রশ্নটি নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারাও নিশ্চয়ই ভাবছেন বলে মন্���ব্য করেন পুলিশের সাবেক আইজি মো. নুরুল হুদা। বিবিসির সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, রাস্তায় আইন প্রয়োগের দায়িত্বে থাকেন যেসব কর্মকর্তা তাকে একদিকে এসব বাচ্চাদের সাথে কী আচরণ করতে হবে, সেটা নিয়ে ভাবতে হয়। অন্যদিকে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য তার ওপর যে আদেশ সেটাও তাকে পালন করতে হয়। "৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস গরমে ওসব ভারী ভারী পোশাক পরে দায়িত্ব পালনের সময় অনেকেই মাথা ঠাণ্ডা রাখাতে পারেন না।" ওদিকে বাস চাপার ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলাটি বুধবার তদন্তের জন্য গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই মামলায় আদালত মূল অভিযুক্ত ড্রাইভার মাসুম বিল্লাহকে সাতদিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে। বাসের কর্মচারী অন্য চার ব্যক্তি এখন আটক রয়েছে। পাশাপাশি, সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত দুই বাসের নিবন্ধন ও ফিটনেস সনদ বাতিল করেছে। শ্যামলীতে সরব মিছিল। বাংলাদেশে বাস চাপা পড়ে দুই কলেজ ছাত্রের মৃত্যুর জেরে বিক্ষোভের প্রতি পুলিশী ব্যবস্থায় কয়েক জায়গায় আইনভঙ্গ হচ্ছে বলে মনে করছেন শিশু অধিকার আন্দোলনকারীরা। +text: সৌদি আরব থেকে গণহারে বাংলাদেশি শ্রমিক ফিরে আসছেন। চলতি বছর অন্তত ১৮,০০০ শ্রমিক সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে এসেছেন - বলছে এক পরিসংখ্যান। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা । দেশে ফেরা এবং এখনো না-ফেরা শ্রমিক, দূতাবাস এবং অভিবাসন বিশেষজ্ঞ - এরকম নানা পক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যাচ্ছে: এর পেছনে বড় কারণ হলো তথাকথিত সৌদি 'ফ্রি ভিসা', আর সৌদি আরবের নতুন শ্রমনীতি এবং অর্থনীতির নতুন বাস্তবতা। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক মাইগ্রেশনের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন ১৫৩ জন শ্রমিক। পর দিন বৃহস্পতিবারও দেড়শজন শ্রমিক ফিরে আসার কথা ছিল। ফিরে আসা শ্রমিকদের কেউ কেউ বলছেন, তাদের ইকামা বা কাজের বৈধতা থাকার পরও তাদেরকে ফিরে আসতে বাধ্য করা হয়েছে। ফ্রি ভিসার নিয়ম ভাঙলেই বহিষ্কার করা হচ্ছে শ্রমিকদের "ফ্রি ভিসায় কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের ইকামা ফি বাড়িয়ে দেয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে" - বলছিলেন সৌদি আরবে ১৬ বছর ধরে কর্মরত এস এম শামীম। মি. শামীমের অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশ থেকেই সবচেয়ে বেশি শ্রমিক ফ্রি ভিসায় সৌদি আরবে কাজ করতে যান। ভিসায় উল্লেখ থাকা নির্দিষ্ট কোম্পানির বাইরে কাজ করলে সেটি সৌদি আইনে এখন অবৈধ। কিন্তু ফ্রি ভিসায় গিয়ে আয় রোজগার বাড়াতে অনেকেই সে কাজটি করত বাধ্য হন। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: সৌদি আরব থেকে শ্রমিক ফেরত, চিন্তিত দূতাবাস কুয়েতে গৃহকর্মী বেচাকেনার অনলাইন 'দাসীর বাজার' "এখন সৌদি আরবের যে নতুন রুলস তাতে ওয়ার্ক পারমিটের ভেতর আপনার যে পেশা তার বাইরে আপনি কোনো কাজ করতে পারবেন না। কিন্তু ৪-৫ লাখ টাকা খরচ করে যারা এখানে আসে তারা ৬০০, ৭০০ বা ৮০০ রিয়াল বেতন পায় এই টাকায় তাদের হয় না। তখন তারা কী করে, ডিউটির পরে তারা বিভিন্ন জায়গায় কাজে যায়।" "কিন্তু যদি সে ধরা পড়ে, তখন পুলিশ চাইলে তাকে পাঠায়ে দিতে পারে। এটাও একটা কারণ।" এস এম শামীম বলেন, সব দেশের শ্রমিকদেরই একইভাবে ফেরত পাঠাচ্ছে সৌদি কর্তৃপক্ষ, তবে বাংলাদেশের শ্রমিকরা সংখ্যায় বেশি। "এর আরেকটা কারণ হলো - সে স্পন্সরের সঙ্গে চুক্তি করে আসে যে তার ঐখানে কাজ করবে। ধরেন, ড্রাইভার হিসেবে গেল। কিন্তু সে গিয়ে সেখানে সুবিধা-অসুবিধা দেখে অন্য যায়গায় গিয়ে কাজ করা শুরু করলো।" "কোনো শ্রমিক এভাবে কারো বাসা বা ফ্যাক্টরি থেকে বেরিয়ে গেলে ঐ মালিক তার বিরুদ্ধে একটা জিডি করে রাখে। এরপর ঐ শ্রমিক যখন ধরা পড়ে তখন তাকে বের করে দেয়।" সৌদি আরবের শ্রমনীতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে এ ছাড়া সৌদি সরকার ফ্রি ভিসার শ্রমিকদের জন্য ইকামা নবায়ন ফি-ও এখন বাড়িয়ে দিয়েছে। মি. শামীম জানান, "এখন ইকামা রিনিউ করতে লেবার অফিসের ফি হচ্ছে প্রতি মাসে ৬শ রিয়াল। কিন্তু ২০২০ সাল থেকে সেটি ৮শ রিয়াল করা হয়েছে। সৌদিতে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা বলছেন এ ফি-টা খুব বেশি, এটা পে করা অনেকের পক্ষেই অসম্ভব।" মি. শামীমের মতে - "এখন ফ্রি ভিসাতে কোনো লোকের কোনো অবস্থায়ই সৌদি আরব আসা যাবে না। কোনো লোকের আপন ভাই যদি বলে যে তুমি আসো তোমাকে ফ্রি ভিসায় নিয়ে আসতেছি, আমার পরামর্শ হইলো আপন ভাইয়ের কথাও শুনবেন না। বাংলাদেশ সরকারের উচিত ফ্রি ভিসার লোক পাঠানো পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া।" 'সৌদি আরব তাদের অর্থনীতি ও শ্রমনীতিকে নতুন করে সাজাচ্ছে' এদিকে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট বা রামরু'র চেয়ারপারসন ড. তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, সব দেশের শ্রমিকদের জন্য সৌদি সরকারের এটি অভিন্ন নীতি নিয়েছে। সৌদি সরকার গাড়ি চালনা এবং নানা পেশায় নারীদের সুযোগ দিয়েছে - ফলে এসব জায়গায় কর্ম��ত শ্রমিকরা সমস্যায় পড়ছে। "তাদের যে তেলকেন্দ্রিক অর্থনীতি, তারা দেখতে পাচ্ছে যে আগামী দশ বিশ বছরের মাথায় সেই তেল থেকে ইনকাম ক্রমশ কমে আসবে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে আসবে। তাই তারা তাদের পুরো ইকনমিটাকে আবার ঢেলে সাজাচ্ছে। তাদের শ্রম ব্যবস্থার ভেতরে তাদের নিজ পপুলেশনকে প্রথমবারের মতো জোরের সাথে নিয়ে আসছে।" বিবিসি বাংলায় আরো খবর: বেঁটে পুরুষদের কী যৌনসঙ্গী পেতে সমস্যা হয়? দিল্লির বায়ুদূষণের মধ্যে কেমন খেলবে বাংলাদেশ? ভারতের সাথে চুক্তি: প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেবে বিএনপি অধ্যক্ষকে পানিতে নিক্ষেপ: যা ঘটেছিল সেদিন বায়রা মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান রামরুর চেয়ারপারসন মিজ সিদ্দিকীও মনে করেন, ফ্রি ভিসার নামে যে ভিসা প্রচলিত ব্যবস্থায় বাংলাদেশি শ্রমিক সৌদি আরবে যাচ্ছে সেটা বন্ধ করা দরকার। বাংলাদেশ দূতাবাসের পরামর্শ এদিকে, সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশি শ্রমিক ফেরত আসা নিয়ে আলোচনার প্রেক্ষিতে রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাস গত সপ্তাহে একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, "যদি কেউ স্পন্সরের বাইরে কাজ করে, পালিয়ে যায় কিংবা ইকামা, বর্ডার ও শ্রম আইনের কোনো ধারা ভঙ্গ করে তাহলে তাকে আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এসব সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আটক করে সৌদি সরকারের অর্থায়নে ডিপোর্টেশন সেন্টারের মাধ্যমে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে পারে। "এছাড়া সৌদি সরকার কর্তৃক সম্প্রতি কিছু পেশা ও সেক্টরে নন-সৌদিদের কাজ করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় ঐসকল পেশায় যদি কোনো প্রবাসী নিযুক্ত থাকেন, তিনি অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবেন এবং এরকম অবৈধ প্রবাসীদেরও সৌদি কর্তৃপক্ষ আটক করে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়।" কেউ নির্দোষ দাবি করলে তাকে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগেরও পরামর্শ দেয়া হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে। নারী শ্রমিকরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে ব্র্যাক মাইগ্রেশনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ১০ মাসে ৯৬০জন নারী শ্রমিক সৌদি আরব থেকে ফিরে এসেছে। এর মধ্যে ৪৮জন নারীর মৃতদেহ এসেছে সৌদি থেকে। ফিরে আসা এই নারীদের বেশিরভাগই নির্যাতনের শিকার হবার অভিযোগ করছেন। সৌদি আরব থেকে ফিরে আসা কয়েকজন নারী শ্রমিক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী জানান, নির্যাতন সইতে না পেরে পালিয়ে দূতাবাসে গিয়ে বাংলাদেশে ফিরেছেন তিনি। তিনটি বাসা পরিবর্তন করেও একই অভিজ্ঞতার শিকার হন এই নারী। "ওদের কথা হচ্ছে, টাকা দিয়ে ওরা কিনে আনে। ওরা যখন যেটা ইচ্ছা মন যা চাইবে তাই করাবে। কোনো বাধা দিতে পারবা না। আমি তিনটা বাসা চেঞ্জ করছি। তিনটা বাসাতে একই কাহিনী। আমি অ্যাম্বাসিতে যখন গেছি, চারশ মেয়ে পাইছি। সবারই কিছু না কিছু এরকম অভিজ্ঞতা।" শ্রমিক ফিরে আসার সংখ্যাকে 'ব্যাপক' বলা যায় না: বায়রা শ্রমিক পাঠানোর সাথে জড়িত রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর পক্ষে বলা হচ্ছে, পুরুষ শ্রমিকদের ফিরে আসাটা স্বাভাবিক। বায়রা মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান জানান, সৌদিতে প্রায় ১৮ লাখ শ্রমিক কাজ করছে। প্রায় চার লাখের মতো নারী শ্রমিক আছে। মি. নোমান বলেন, প্রতিমাসে যত শ্রমিক বিদেশে যাচ্ছে তার প্রায় ষাট শতাংশ সৌদিতে যাচ্ছে। "যে পরিমাণ লোক গিয়েছে, যে পরিমাণ চাকরি করছে সে তুলনায় যে পরিমাণ ফেরত আসছে সেটাকে ব্যাপক বলা যায় না" - বলেন তিনি। "নারী শ্রমিকদের নিয়ে আমরা স্টাডিতে দেখেছি ৬০-৭০% শ্রমিক ফেরত আসছে হোম সিকনেস, ফুড হ্যাবিট এবং ওয়ার্কলোড নিতে না পারার কারণে। আর ২০ শতাংশের মতো নারী বিভিন্ন রকম অ্যাবিউজ হচ্ছে।" "সেটা কেন হচ্ছে? আমরা যদি সেইসব নিয়োগকারীদের চিহ্নিত করতে পারি এবং তাদেরকে আর পাঠাবো না সেটা হতে পারে। ট্রেনিংয়ে যদি ঘাটতি থাকে সেটা আমাদের পূরণ করা দরকার" - বলেন মি. নোমান। আরো পড়তে পারেন: সৌদিতে নারী শ্রমিক নির্যাতনের কেন সুরাহা নেই? 'যৌন প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় তিনদিন খেতে দেয়নি' সৌদি থেকে নারী শ্রমিকদের মৃতদেহ আসার সংখ্যা বাড়ছে সৌদি আরব থেকে বিপুল সংখ্যায় দেশে ফিরে আসছেন বাংলাদেশি শ্রমিকরা। নির্যাতনের শিকার হবার অভিযোগ তুলে আরো ফিরে আসছেন শত শত নারীকর্মী। এ নিয়ে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ, কিন্তু এর পেছনে কারণটা কী? +text: বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামানও ব্যবহার করেছে ইসরায়েলি পুলিশ তাদের বেশিরভাগ আহত হয়েছে আল-আকসা মসজিদে, যেখানে ফিলিস্তিনিদের ছোঁড়া পাথর আর বোতলের জবাবে ইসরায়েলি পুলিশ রাবার বুলেট এবং স্টান গ্রেনেড ছুঁড়েছে। রমজানের বিদায়ী জুম্মা উদযাপনের জন্য এর আগে সেখানে হাজার হাজার মুসলমান সমবেত হয়। রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, আহতদের চিকিৎসার জন্য তারা সেখানে একটি অস্থায়ী ফিল্ড হাসপাতাল চালু করেছে। ওই এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তেজনা চলছে, কার��� ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের জন্য পূর্ব জেরুজালেমের বাড়িঘর থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করার সম্ভাবনায় প্রতিদিনই কলহ তৈরি হচ্ছে। আল-আকসা মসজিদ ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে অন্যতম শ্রদ্ধার স্থান, তবে এটি ইহুদিদের কাছেও একটি পবিত্র স্থান, যাকে তারা টেম্পল মাউন্ট হিসাবে জানেন। এই স্থানটিতে এর আগেও একাধিকবার সহিংসতা হয়েছে, যা আবার দেখা গেল শুক্রবার রাতেও। ইসরায়েলি পুলিশ দাবি করেছে, সন্ধ্যার নামাজের পর 'হাজার হাজার ধর্মাবলম্বী দাঙ্গা শুরু করলে' তারা 'আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য' শক্তি প্রয়োগ করতে বাধ্য হয়েছে। আল-আকসার একজন কর্মকর্তা মসজিদের লাউডস্পিকারে সবাইকে শান্ত থাকার আহবান জানান। রয়টার্স নিউজ এজেন্সি জানাচ্ছে, লাউডস্পিকারে তিনি বলছিলেন, ''পুলিশ বাহিনী অবিলম্বে মুসল্লীদের উদ্দেশ্যে স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ বন্ধ করুন। । তরুণরা শান্ত হোন।" আরও পড়ুন: আরবদের হটিয়ে যেভাবে ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল জেরুজালেমে কেন প্রার্থনার স্থান নিয়ে দ্বন্দ্ব? জেরুজালেম রাজধানীর স্বীকৃতি পেলে বিপদ কোথায়? আরব-ইসরায়েল সংঘাত শুরু যে ৬৭ শব্দের অনুচ্ছেদে মুসলিম ও ইহুদি উভয় ধর্মেরই পবিত্র স্থান বলে পরিগণিত আল-আকসা মসজিদের সামনে মোতায়েন করা ইসরায়েলি পুলিশ রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, রাবার লাগানো ধাতব বুলেটে আহত হওয়ার পর সেখান থেকে অন্তত ৮৮ জন ফিলিস্তিনিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের অন্তত ছয় জন কর্মকর্তা আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। শুক্রবারের সহিংসতার পর সবাইকে উত্তেজনা প্রশমন করার আহবান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। সেই সঙ্গে জেরুজালেমের শাইখ জারাহ এলাকা থেকে উচ্ছেদের হুমকিতে ক্ষোভও বাড়ছে। জাতিসংঘের একজন মুখপাত্র ইসরায়েলের প্রতি আহবান জানিয়েছেন যেন যেকোনো ধরনের উচ্ছেদের কর্মকাণ্ড বন্ধ করা হয়। ''বিক্ষোভকারীদের প্রতি যেন সর্বোচ্চ সহনশীলতা দেখানো হয়'' তিনি আহবান জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ''উত্তেজনা বৃদ্ধি নিয়ে গভীর উদ্বেগে'' রয়েছে ওয়াশিংটন। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা মামলার বিষয়ে সোমবার একটি শুনানি করতে যাচ্ছে ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: ভারতবর্ষে এ বড় কঠিন সময়, এ বড় দু���খের সময় খালেদা জিয়ার সবশেষ অবস্থা সম্পর্কে যা বললেন চিকিৎসক যে রহস্যময় রোগটি ধাঁধাঁয় ফেলে দিয়েছে কানাডার ডাক্তারদের কোভিড থেকে সেরে ওঠার পরও যেসব জটিলতা থেকে যায় জেরুজালেমে সংঘর্ষে অন্তত ১৬৩ জন ফিলিস্তিনি আর ছয় জন ইসরায়েলি পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছে বলে ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট ইমারজেন্সি সার্ভিস এবং ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে। +text: জীবিত প্রাণী বিক্রি হয় যেসব বাজারে, সেসব বাজার থেকে মানবদেহে নতুন ধরণের রোগ জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার সম্ভবানা বেশি থাকে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরকমও ধারণা করা হচ্ছে যে উহান অঞ্চলের সেরকমই একটি বাজার থেকে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়েছে। করোনাভাইরাস যেন আরো বেশি ছড়িয়ে না পড়তে পারে তা নিশ্চিত করতে সাময়িকভাবে বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত ব্যবসা বন্ধ করেছে চীন, তবে সংরক্ষণবাদীরা মনে করেন এই পদক্ষেপ নেয়া যথেষ্ট নয়। তাদের বক্তব্য, বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত বাণিজ্য স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করা হলে তা মানুষের স্বাস্থ্যজনিত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বন্যপ্রাণীর অবৈধ চোরাকারবার বন্ধ করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ক্যাম্পেইনাররা মনে করেন, ঐতিহ্যগতভাবে চীনা ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর দেহের অংশ ব্যবহার হওয়ায় এবং চীনাদের খাবার হিসেবে বিভিন্ন রকম বন্যপ্রাণীর চাহিদা থাকায় বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের নিয়ে বাণিজ্য বেড়ে চলেছে। করোনাভাইরাস: লক্ষণ ও বাঁচার উপায় কী? 'সংক্রমণের অন্যতম প্রধান উৎস' মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া সংক্রমণের ৭০ শতাংশের বেশি ধরণের সংক্রমণই বিভিন্ন প্রাণী থেকে - বিশেষ করে বন্যপ্রাণী থেকে - শুরু হয় বলে ধারণা করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরা মনে করেন নতুন করোনাভাইরাস বাদুর থেকে ছড়ানোর বড় একটি সম্ভাবনা রয়েছে। তবে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হওয়ার আগে এই ভাইরাস অন্য কোনো অচেনা প্রাণীর মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। সিভিয়ার অ্যাকিউট রেস্পিরেটরি সিনড্রোম (সার্স) ও মিডল ইস্ট রেস্পিরেটরি সিনড্রোমের (মার্স) পেছনে থাকা ভাইরাসও বাদুর থেকে এসেছে বলেই ধারণা করা হয়। আরো পড়তে পারেন: অন্য প্রাণী থেকে মানুষের দেহে রোগ ছড়াচ্ছে কেন? করোনাভাইরাসের খবর ফাঁসকারী সেই চীনা ডাক্তার মারা গেছেন করোনাভাইরাস: বিয়ে বাতিল, শ্রেণীকক্ষ খালি, পাল্টে গেছে জীবন সদা পরিবর্তনশীল করোনাভাইরাস কতটা বিপজ্জনক? চীনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বৈধ ও অবৈধ বন্যপ্রাণীর বাজার রয়েছে তবে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হওয়ার আগে সেগুলো সিভেট জাতীয় বিড়াল এবং উটের মধ্যে ছড়ায় বলে অনুমান করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের ডক্টর বেন এমব্রেক বলেন, "এমন ধরণের বন্যপ্রাণী ও তাদের বাসস্থানের সংস্পর্শে আমরা আসছি, যেগুলোর সাথে একসময় মানুষের কোনো সম্পর্কই ছিল না।" "হঠাৎই আমরা এমন সব ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হচ্ছি যেগুলো আসাদের জন্য একেবারেই নতুন।" "আর সম্পূর্ণ অচেনা এসব ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া আর পরজীবীর কারণে অনেকরকম নতুন রোগ ছড়িয়ে পড়ছে মানুষের মধ্যে", বলেন ডক্টর এমব্রেক। ভূ-পৃষ্ঠে থাকা প্রায় ৩২ হাজার জাতের মেরুদন্ডী প্রাণী সম্পর্কে এক গবেষণায় জানা যায় যে এসব প্রাণীর ২০ শতাংশই বৈধ বা অবৈধভাবে বৈশ্বিক বন্যপ্রাণী বাজারে বেচাকেনা হয়ে থাকে। সংরক্ষণবাদী গ্রুপ ডব্লিউডব্লিউএফ'এর এক গবেষণায় উঠে আসে, বৈশ্বিক বন্যপ্রাণী বাজারে বছরে প্রায় ২ হাজার কোটি ডলারের বাণিজ্য হয়, টাকার অঙ্কের হিসেবে মাদক ব্যবসা, মানব পাচার ও অবৈধ অর্থ লেনদেনের পরেই যা বিশ্বব্যাপী অবৈধ ব্যবসার তালিকায় চতুর্থ সর্বোচ্চ। চীনের অর্থনীতির একটি বড় অংশ এই বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত ব্যবসা। বহু প্রাণী বিলুপ্তপ্রায় হওয়ার কারণ হিসেবে এই বাণিজ্যকে দায়ী মনে করা হয়। ডক্টর এমব্রেক মনে করেন, করোনাভাইরাসের মত প্রাণঘাতী রোগ যেন ভবিষ্যতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে এখনই বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত বাণিজ্য বন্ধ করা উচিত। "জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে দীর্ঘ মেয়াদে বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত বাণিজ্য বন্ধ করা উচিত। কারণ আমরা জানি যে প্রাণঘাতী রোগ ছড়ানোর মত ভয়াবহ কোনো ঘটনা আবারো ঘটতে পারে।" চীনের এক বন্যপ্রাণীর বাজারে ময়ুর বিক্রি করছেন এক ব্যক্তি তবে চীনের সরকারের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা যে অস্থায়ী হবে, তা নিশ্চিত করেছে তারা। তিনটি চীনা সংস্থার যৌথভাবে প্রকাশিত এক নির্দেশনায় বলা হয়, "চীনে মহামারী অবস্থা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরণের বন্যপ্রাণী বিক্রি, স্থানান্তর ও পোষা নিষিদ্ধ থাকবে।" ২০০২ সালে সার্স ছড়িয়ে পড়ার পর বেইজিং একই ধরণের একটি নিষে��াজ্ঞা ঘোষণা করেছিল। তবে সংরক্ষণবাদীরা বলছেন, সেসময় নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়ার কয়েকমাসের মধ্যেই কর্তৃপক্ষ নজরদারিতে কিছুটা ঢিল দেয় এবং বন্যপ্রাণীর বাণিজ্যও ধীরে ধীরে শুরু হয়ে যায়। করোনাভাইরাস নিরাপত্তায় যে সতর্কতা প্রয়োজন পরিস্থিতির পরিবর্তন? চীনে বন্যপ্রাণী বাণিজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি হয়তো পরিবর্তিত হতে যাচ্ছে। এ বছরের সেপ্টেম্বরে প্রাকৃতিক ও জীববৈচিত্র বিষয়ক একটি বৈশ্বিক বৈঠক আয়োজন করতে যাচ্ছে বেইজিং, যেটিকে বলা হয় কনভেনশন অন বায়োলজিকাল ডাইভার্সিটি। ১৯৯২ সালে স্বাক্ষরিত এই সম্মেলনটির মূল লক্ষ্য বৈশ্বিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ নিশ্চিত করা। জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টার গভার্নমেন্টাল সাইন্স পলিসি প্ল্যাটফর্ম অ্যান্ড ইকোসিস্টেম সার্ভিসেস'এর এক গবেষণায় উঠে আসে যে প্রায় ১০ লাখের মত প্রাণী বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে। চীনের বাজারে বিক্রি হওয়া সিভেট জাতীয় বিড়াল থেকে সার্স ভাইরাস মানুষের মধ্যে ছড়িয়েছিল বলে ধারণা করা হয় শুধু নিজেদের দেশের অভ্যন্তরের বন্যপ্রাণীদের ঝূঁকির মধ্যে ফেলছে তাই নয়, দেশের বাইরের জীববৈচিত্র্যকেও ঝুঁকিতে ফেলছে বলে চীনের বিরুদ্ধে সমালোচনা হচ্ছে। অন্যতম বিশ্বশক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে বিশ্বব্যাপী অবকাঠামো নির্মাণে চীনের নেয়া বেল্ট অ্যন্ড রোড উদ্যোগের সমালোচনা হচ্ছে। সমালোচকরা বলছেন, চীন প্রাকৃতিক সম্পদ যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করছে। যদিও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের প্রচারণা চালানোর সময় বারবার 'টেকসই' শব্দটি ব্যবহার করেছেন। সম্প্রতি চীনেয় রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমগুলোর সম্পাদকীয়তেও তাদের দেশের নিয়ন্ত্রণহীন বন্যপ্রাণী বাজারের সমালোচনা করা হয়েছে। সংরক্ষণবাদীরা বলছেন জীববৈচিত্র রক্ষার বিষয়ে চীন যে আসলেই ইচ্ছুক, তা এই করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব ছড়ানোর ফলে প্রমাণ করার সুযোগ পেয়েছে তারা। উদাহরণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা তুলে ধরছেন চীনে হাতির দাঁত আমদানি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত সফলভাবে বাস্তবায়নের বিষয়টি। আন্তর্জাতিক পক্ষগুলোর অনেকবছর ক্রমাগত চাপ প্রয়োগের পর চীন সরকার এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তবে বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা মনে করেন বন্যপ্রাণীর দেহের অংশ দিয়ে তৈরি করা পণ্যের বিষয়ে এই ধরণের নিষেধাজ্ঞা শুধু চীনে নয়, সারা বিশ্বে বাস্তবায়ন করা উচিত। করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার পর বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা ক্যাম্পেইনাররা চীনের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন তারা বন্যপ্রাণী বাণিজ্য স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করে। +text: দুই সন্তান নীতির পক্ষে ভারতে আন্দোলন। দিল্লি, ২০১৭ এই আবেদনে যারা সই করেছেন তাদের বেশির ভাগই ক্ষমতাসীন দল বিজেপির, তবে আরও দু-তিনটি দলের এমপিরাও তাতে সামিল হয়েছেন। এই দাবির পক্ষের ক্যাম্পেনাররা বলছেন, যেভাবে ভারতের জনসংখ্যা অচিরেই চীনকেও টপকে যেতে চলেছে - তাতে দুই সন্তানের পর শাস্তির বিধান রেখে আইন করা ছাড়া কোনও গতি নেই। তবে বিরোধী দলগুলি আবার মনে করছে, যে বিজেপির অনেক নেতাই হিন্দুদের বেশি বেশি সন্তানের জন্ম দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করে থাকেন - সেই দলের এমপিদের মুখে অন্তত এধরনের দাবি মানায় না। জনসংখ্যা সমাধান ফাউন্ডেশন নামে দিল্লির একটি এনজিও গত চার বছর ধরে গবেষণার পর দাবি করছে, চীন যেভাবে এক সময় কঠোরভাবে এক সন্তান নীতি প্রয়োগ করেছিল, ভারতেও অনেকটা সেই ধাঁচে দুই সন্তান নীতি চালু করলেই কেবল জনবিস্ফোরণ ঠেকানো সম্ভব। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের হাতে পিটিশন তুলে দিচ্ছে এমপি-দের প্রতিনিধিদল তাদের প্রস্তাব নিয়ে তারা প্রায় শতিনেক এমপি-র কাছে গিয়েছিলেন, যার মধ্যে ১২৫জন তাতে সম্মতি দিয়েছেন এবং গত সপ্তাহে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের হাতে সেই পিটিশন তারা তুলেও দিয়েছেন। ওই এনজিও-র চেয়ারপার্সন অনিল চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "যেভাবে ১৩৫ কোটি মানুষের দেশ ভারতে রিসোর্সের ওপর চাপ বাড়ছে - হাসপাতালে জায়গা নেই, কলেজে ভর্তির জায়গা নেই, রাস্তায় জায়গা নেই - তাতে বেশি সন্তান উৎপাদন করলে কড়া শাস্তি ছাড়া কোনও উপায় নেই।" "আমরা প্রতি বছর দেশে একটা অস্ট্রেলিয়ার সমান জনসংখ্যা যোগ করছি। তাই আমরা মনে করছি দুই সন্তানের বেশি হলে বাবা-মার ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হোক, প্রয়োজনে জেলেও পাঠানো হোক।" ভারতে স্টেরিলাইজেশন অস্ত্রোপচারের ৮৬ শতাংশই করা হয় মেয়েদের ওপর, ওই ফাউন্ডেশনের জাতীয় আহ্বায়ক মমতা সেহগল মনে করেন এই আইন চালু হলে জন্মনিয়ন্ত্রণের দায় মেয়েদের দিকে ঠেলে দেওয়ার প্রবণতাও কমবে। পিটিশনে সই করেছেন বিজেপি এমপি উদয় প্রতাপ সিং মিস সেহগলের কথায়, "দেখুন, এই দায়িত্ব তো শুধু মেয়েদের হতে পারে না। বাবা-মা মিলেই সন্তানকে পৃথিবীতে আনেন, কাজেই দায় দুজনেরই সমান। এই জন্যই আমরা বলছি আইন চালু হলে সবাইকে তা মানতে হবে, আর আইনটাও হতে হবে কঠোর আইন।" এই কড়া দাওয়াইতে যারা সম্মতি দিয়েছেন তার মধ্যে শতাধিক এমপি-ই বিজেপির, এছাড়া দক্ষিণপন্থী দল শিবসেনার জনা পনেরো ও তেলুগু দেশমের দু-চারজন এমপিও আছেন। কিন্তু যে বিজেপির এমপি সাক্ষী মহারাজ ও আরও কোনও কোনও নেতা-নেত্রী এক সময় হিন্দুদের পাঁচ-দশটি করে সন্তান জন্ম দেওয়ার কথা বলেছেন, সেই দলই কেন এখন দুই সন্তান নীতিতে সমর্থন করছে? সাতনার বিজেপি এমপি গণেশ সিং ওই পিটিশন নিয়ে নিজে রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়েছিলেন, তিনি অবশ্য বিবিসির কাছে দাবি করছেন "ওইসব কথাবার্তা কারও ব্যক্তিগত বিশ্বাস হতে পারে, কিন্তু হিন্দুধর্ম কখনও এমন কথা বলে না।" বিজেপির বিতর্কিত এমপি সাক্ষী মহারাজ ভারতে জনসংখ্যা বিস্ফোরণের জন্য মুসলিমদের দায়ী করেছেন প্রকাশ্যেই গণেশ সিং আরও বলছিলেন, "জনসংখ্যার বিস্ফোরণ দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা, একে ধর্ম-জাতপাতের দৃষ্টিতে দেখাই উচিত নয় - এবং এই আইন সবার জন্য প্রযোজ্য হওয়া দরকার।" কংগ্রেস নেতা নওয়াব মালিক অবশ্য বলছেন, "বিজেপি যতক্ষণ না তাদের সাধ্বী নেত্রী বা সাক্ষী মহারাজের মতো নেতাদের বোঝাতে না-পারছে, ততক্ষণ এই সব আইন প্রণয়নের পিটিশন তাদের দ্বিচারিতা ছাড়া কিছুই নয়।" দিনদশেক আগেই ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পার্লামেন্টে বিজেপিরই এক এমপি রাজকুমার সাইনির প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছে, দেশে এই মুহুর্তে দুই সন্তান নীতি চালু করার কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই। কিন্তু শতাধিক বিজেপি এমপি-র এই পিটিশন থেকেই স্পষ্ট, এই প্রস্তাবে দেশে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া হয় শাসক দল সম্ভবত সেটাই পরখ করতে চাইছে। ভারতে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে যাতে 'দুই সন্তান নীতি' চালু করা হয়, সেই দাবি জানিয়ে দেশের সোয়াশো এমপি রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন জানিয়েছেন। +text: সাম্প্রতিক কালে এটাই কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় জঙ্গী হামলা মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলওয়ামা জেলার অবন্তীপুরায় এই হামলা হয়। ৭০টি ট্রাক আর বাসে করে আধাসামরিক বাহিনী সিআরপিএফের প্রায় আড়াই হাজার সদস্য জম্মু থেকে শ্রীনগরে যাওয়ার সময় য��নবহরটির ওপর হামলা চালায় সন্দেহভাজন জঙ্গীরা। পাকিস্তান-ভিত্তিক নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন জৈশ-এ মোহাম্মদ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। পুলিশ আর সিআরপিএফ কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, এটা ছিল একটা আত্মঘাতী হামলা এবং হামলাকারীর নাম আদিল আহমেদ। তিনি পুলওয়ামা জেলারই বাসিন্দা এবং গত বছর জঙ্গী সংগঠন জৈশ এ মোহাম্মদে যোগ দিয়েছিলেন - বলছে পুলিশ। প্রাচীন শহর অবন্তীপুরার কাছে লেথপোড়া নামের একটি জায়গায় এই হামলা হয়। সিআরপিএফের আই জি অপারেশন জুলফিকার হাসান জানিয়েছেন, প্রায় ২৫০০ সদস্য ৭০টি ট্রাক আর বাসে করে জম্মু থেকে শ্রীনগরের দিকে যাচ্ছিলেন। লেথপোড়ার কাছে একটি বিস্ফোরক বোঝাই এসইউভি কনভয়ে ঢুকে পড়ে বিস্ফোরণ ঘটায় ৫৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের একটি গাড়িতে, আর তার সঙ্গে সঙ্গেই আশপাশ থেকে জঙ্গীরা বেরিয়ে এসে বৃষ্টির মতো গুলি চালাতে শুরু করে। বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি দিয়ে এ আক্রমণ চালানো হয় ঘটনার যে ছবি পাওয়া যাচ্ছে, তা দেখে বিশ্লেষকরা বলছেন সম্ভবত শুধু গুলি নয়, রকেটচালিত গ্রেনেড বা আরপিজিও ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে। কারণ যে আকারের গর্ত দেখা যাচ্ছে, তা সাধারণ গুলির চিহ্ন নয়। একটি বাস সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে, আর কনভয়ে থাকা অন্য গাড়িগুলিতে গুলি লেগেছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছনো সাংবাদিকরা বলছেন, অনেকটা এলাকা জুড়ে যেন যুদ্ধক্ষেত্রের মতো চেহারা। চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে দেহাবশেষ, সিআরপিএফ সদস্যদের ব্যাগ ও অন্যান্য সামগ্রী, বিধ্বস্ত সেনা ট্রাকগুলি রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। জম্মু শ্রীনগর হাইওয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হামলাকারীদের খোঁজে এলাকায় চিরুণি তল্লাশি চলছে। আট-দশদিন আগেই একটা সাধারণ সতর্ক বার্তা জারী করা হয়েছিল যে এধরণের একটা হামলা হতে পারে, তবুও যে সতর্ক হন নি আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যরা, সেটা অনেক নিরাপত্তা বিশ্লেষকই বলছেন। আর গোয়েন্দারাই বা কেন নির্দিষ্টভাবে সতর্ক করতে পারেন নি, সেই প্রশ্নও উঠছে, বিশেষ করে যখন এর আগেও কাশ্মীরের উরিতে সেনাছাউনিতে হামলা হয়েছে, তারও আগে পাঠানকোটের একটি ছাউনিতে হামলা হয়েছে। যেভাবে হামলা হয়েছে, সেটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করেই চালানো হয়েছে, সেটাও পরিষ্কার। জঙ্গীদের কাছে সিআরপিএফ বাহিনীর চলাচলের যে নির্দিষ্ট তথ্য ছিল, সেটাও বোঝা যাচ্ছে। সেই তথ্য জঙ্গীদের হাতে কী করে গে���, সেটাও একটা প্রশ্ন। ২০১৮ সালে অন্তত ২৫০ জঙ্গী নিহত হয়েছে কাশ্মীরে আর এবছরে এখনও পর্যন্ত ২০ জন জঙ্গী মারা গেছে। তাই জঙ্গী সংগঠনগুলি যে এরকম একটা প্রত্যাঘাত হানবে, এরকম আশঙ্কা ছিলই। বিজেপি, কংগ্রেস, ন্যাশনাল কনফারেন্স, পিডিপি থেকে শুরু করে সব রাজনৈতিক দলই এই হামলাকে কাপুরুষোচিত বলে বর্ণনা করেছেন। বিবিসি বাংলায় কাশ্মীর প্রসঙ্গ নিয়ে দেখতে পারেন এ ভিডিওটি: কী আছে এই কাশ্মীর সঙ্কটের মূলে যা দুই দেশকে বারবার যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে? ভারত শাসিত কাশ্মীরে এক জঙ্গী হানায় অন্তত ৩৪ জন কেন্দ্রীয় সামরিক বাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছেন বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে।। +text: ভিডিওটিতে এই তরুণের দাবি "একটা ছেলের সবার সামনে সিগারেট খাওয়া নরমাল কিন্তু একটা মেয়ের জন্য নরমাল না"। প্রায় ১২ মিনিটের ওই ভিডিও ইউটিউবে দিয়েছেন সাব্বির নামের এক তরুণ। ইউটিউবে পাওয়া ভিডিওটির নীচে এর স্ক্রিপ্ট লেখক ও পরিচালক হিসেবে হায়াত মাহমুদ রাহাতের নাম উল্লেখ রয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যায় যে ছেলে ও মেয়েদের ধূমপান নিয়ে একের পর এক বক্তব্য দিয়েছেন সাব্বির যা অনেকের কাছেই আপত্তিকর ও বিপজ্জনক উস্কানি বলে মনে হয়েছে। যেমন মানুষের সমাগমের জায়গা বা পাবলিক প্লেসে তার নিজের ছেলে বন্ধুরা ধূমপান করলে সেটায় তার সমস্যা হয়না, সমস্যা হয় মেয়েরা ধূমপান করলে। ভিডিওতে তার ডায়ালগটি এমন- "তোরা ছেলে মানুষ। তোরা এ জায়গায় স্মোক করলে এ জায়গার এনভায়রনমেন্ট চেঞ্জ হচ্ছেনা। কিন্তু একটা মেয়েমানুষ যখন এভাবে পাবলিকলি স্মোক করছে এ জায়গার পুরো এনভায়রনমেন্ট চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে"। ধূমপান নিয়ে তার আরেকটি যুক্তি হলো, "একটা ছেলের সবার সামনে সিগারেট খাওয়া নরমাল কিন্তু একটা মেয়ের জন্য নরমাল না"। ফেসবুকে এ ভিডিও নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে অনেককেই তবে সবচেয়ে ভয়ংকর দিক হলো ভিডিওর এক পর্যায়ে তিনি গোপনে মেয়েদের ছবি তুলে সেটি ফেসবুকে আপলোড করে দেয়ার আহবান জানিয়েছেন সবাইকে। ফেসবুকে এ ভিডিও নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে অনেককেই। তানিয়া কামরুন নাহার নামে একজন এ বিষয়ে একটি পোস্টে তার মন্তব্যে লিখেছেন "মূর্খ ও সাইকোপ্যাথ"। অনিক খান নামে একজন লিখেছেন, "আমার এই ভিডিও দেখে প্রচণ্ড মেজাজ খারাপ হয়েছে! এন্টি-পাবলিক স্মোকিং একটা স্ট্যান্ড ���িলেও কথা ছিল"! সায়েদ খালেদের মন্তব্য, "একটা ফালতু ভিডিও ছাড়া আর কিছু দেখি না ওটাতে"। অপরাজিতা সঙ্গীতা লিখেছেন, " আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কোন বিকল্প নেই"। রুবা চৌধুরী মন্তব্য, " রাস্তায় চলতে ফিরতে অশিক্ষিত কিছু মানুষ মাঝে মাঝে এমন খুব তত্ত্ব ঝাড়ে তখন তাদের সবাই পাগলা কি না কয় ভাব কইরা অদেখা করে এবং আমারেও বলে বাদ দেন আফা। সেই ছাগলের মতো মানুষগুলা এখন ইউটিউব চালাইতে পারে!!! আহসানুল কবির ডালিম লিখেছেন, "ফাত্রারে আইনত শাস্তি দেয়ার উপাই কেউ জানেন"? এম রবিউল ইসলাম লিখেছেন তিনি ভিডিওটি দেখেই রিপোর্ট করেছেন। এভাবে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে গোপনে মেয়েদের ছবি ভিডিও করার উস্কানি দেয়ায় দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন। বাংলাদেশে গত কয়েকদিন ধরে ফেসবুকে অনেকে পোস্ট বা কমেন্ট দিয়ে তীব্র ক্ষোভ আর প্রতিবাদ করছেন একটি ভিডিওতে এক তরুনের দেয়া বক্তব্যের। +text: বাইসাইকেলটিতে বায়ু পরিশোধনকারী যন্ত্র বসানো রয়েছে। দূষিত বায়ু মানব দেহের জন্য ব্যাপক হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ধরুন আপনি বাইসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছেন এবং বাইসাইকেলে এমন একটি যন্ত্র লাগানো রয়েছে যার ফলে দূষণ মুক্ত বাতাস এসে পড়ছে আপনার মুখে। এমনই এক ধরনের যন্ত্রযুক্ত বাইসাইকেল আবিষ্কার করেছে ভিয়েতনামের একদল শিক্ষার্থী। এই সাইকেল বায়ু পরিশোধন করতে পারে। বিবিসি মনিটরিং এর প্রতিবেদনে তাদের গল্প উঠে এসেছে। যেভাবে তৈরি হল এই বাইসাইকেল ভিয়েতনামের দা লাত শহরে মেধাবীদের জন্য বিশেষ একটি স্কুলের নাম থাং লং গিফটেড হাই স্কুল। আরো পড়ুন: বায়ু দূষণ যেভাবে আপনার বুদ্ধি কমাতে পারে বায়ু দূষণ কি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায় সেই স্কুলের শিক্ষার্থী তিন বন্ধু ছয়মাস ধরে পরীক্ষা চালিয়ে বিশেষ একটি বায়ু পরিশোধনকারী যন্ত্র বসানো বাইসাইকেল তৈরি করেছে। যন্ত্রটি বাইসাইকেলের হাতলে বসানো থাকে। পরিশোধনকারী যন্ত্রটিতে রয়েছে তিন পরতের তুলা আর কার্বন শুষে নেয় এমন এক ধরনের কাপড় যার নাম অ্যাক্টিভেটেড কার্বন ফ্যাব্রিক। বিশ্বব্যাপী শহরগুলোতে বায়ু দূষণ খুব বড় একটি সমস্যা। এই দুটি বস্তুর কাজ হল ধুলো আটকানো। এই যন্ত্রটিতে একটি ব্যাটারিও রয়েছে। কীভাবে কাজ করে এটি? বাইসাইকেলের সামনের চাকার দুইপাশে ছোট কয়েকটি পাখা বসানো থাকে। যার সাথে সংযোগ রয়েছে ফিল্টার বা বায়ু পরিশোধনকারী যন্ত্রটির। সাইকেলটি যখন চলতে থাকে তখন চালকের মুখে পরিশোধন করা বায়ু ছুড়ে দেয় এগুলো। পরীক্ষা করে দেখা গেছে যন্ত্রটির ধুলো আটকানোর ক্ষমতা ৮৬ শতাংশ। আর নাইট্রোজেন অক্সাইড কমানোর হার ৬৩ শতাংশ। তবে এটিই প্রথম এমন বাইসাইকেল নয়। ডাচ একজন গবেষকও একই ধরনের বাইসাইকেলের নকশা নিয়ে কাজ করছেন। তার নকশা অবশ্য চালকের মুখে নয়, চালকের আশপাশে পরিশোধিত বায়ু ছুড়ে দেয়। অন্যান্য খবর: 'নিঃশ্বাস নিতে না পেরেই মানুষগুলো ঝাঁপ দিয়েছিল' আপনার বহুতল ভবন কি আগুনের হাত থেকে নিরাপদ সরকারের নিয়ন্ত্রণ চেয়ে ফেসবুকের যত সুপারিশ বিশ্বব্যাপী শহরগুলোতে বায়ু দূষণ খুব বড় একটি সমস্যা হয়ে উঠেছে। +text: এ পর্যন্ত ৮০০জনকে শুক্রাণু দিয়েছেন বলে দাবি সাইমন ওয়াটসনের ৪১ বছর বয়সী পেশাদার শুক্রানুদাতা মি. ওয়াটসন ১৬ বছর ধরে শুক্রাণু দিয়ে আসছেন। তবে এই কাজের জন্য তার কোন লাইসেন্স নেই। মি. ওয়াটসন বলছেন, এ পর্যন্ত আমি অন্তত ৮০০ সন্তানের পিতা হয়েছি। এভাবে আমি যত বেশি সম্ভব সন্তানের পিতা হতে চাই, যাতে আমার রেকর্ড আর কেউ ভাঙ্গতে না পারে। প্রতি তিনমাস পরপর নিজের সুস্থতার বিষয়ে তাকে পরীক্ষা করাতে হয়। সেই রিপোর্ট তিনি ইন্টারনেট এবং সামাজিক মাধ্যমে তুলে দেন, যাতে তার ক্লায়েন্ট তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন। তার বেশিরভাগ ক্লায়েন্ট ইন্টারনেটের মাধ্যমে আসে বলে তিনি জানান। শুক্রাণু দেয়ার জন্য ৫০ পাউন্ড করে সার্ভিস চার্জ নেন সাইমন ওয়াটসন শুক্রাণু দেয়ার জন্য তিনি পঞ্চাশ পাউন্ড করে সার্ভিস চার্জ নেন। নারীরা তার কাছ থেকে শুক্রাণু সংগ্রহ করে বেসরকারি ক্লিনিকে সন্তান জন্ম দেয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। যুক্তরাজ্যে কৃত্রিম গর্ভধারণের বিষয়টি কড়াকড়ি ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এ কারণে অনেকে এই প্রক্রিয়ার দারস্থ হন। নিয়ম না মেনে সন্তান ধারণে অনেক জটিলতা তৈরি হয়। তা সত্ত্বেও অনেকে সন্তান ধারণের জন্য সাইমন ওয়াটসনের মতো দাতাদের শরণাপন্ন হন। যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা সাইমন ওয়াটসন দাবি করেছেন, গত দেড় দশকে তিনি অন্তত ৮০০ সন্তানের পিতা হয়েছেন। +text: সিরিয়ায় গত মাসে ধরা পড়া ইসলামিক স্টেটের আলেক্সান্ডা কোটি, আর এল শাফি এলশেখ তাদের ভাগ্যে কি ঘটবে - তা নিয়ে ব্রিটেন এবং আমেরিকা আলোচনা করছে। বলা হচ্ছে আলেক্সান্ডা কোটি আর এল শাফি এলশেখ নাম��� এই দুই আই এস যোদ্ধা আই এসের এমন একটি সেলের অংশ ছিল - যারা পশ্চিমা জিম্মিদের শিরশ্ছেদ করতো। এর হচ্ছে চার জিহাদির একটি দলের জীবিত দুজন - যাদের ব্রিটিশ টানের ইংরেজির জন্য অন্য আইএস যোদ্ধারাই ১৯৬০ এর দশকের বিখ্যাত পপ গ্রুপের নামে তাদের নাম দিয়েছিল 'বিটলস।' বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: ইসলামিক স্টেট কেন এত বর্বর বা নৃশংস? ইসলামিক স্টেট কোথা থেকে অর্থ পায়? কিভাবে ইসলামিক স্টেটের দখলমুক্ত হলো ইরাক-সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল? আইএসের হত্যাকাণ্ডে নিহত হন যারা এই দলের বাকি দুজনের একজন ছিল মোহামেদ এমওয়াজি - যার ক্যামেরার সামনে ছুরি হাতে জিম্মিদের শিরশ্ছেদ করার ভিডিও সারা দুনিয়ায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। ২০১৬ সালে রাক্কার কাছে এক ড্রোন হামলায় সে নিহত হয়। এ দলের আরেকজন তুরস্কের কারাগারে বন্দী। আইএসের হাতে নিহত হয়েছেন ব্রিটিশ জিম্মি এ্যালান হেনিং এবং ডেভিড হেইনস। মি. হেইনসের মেয়ে বেথানি বলেছেন, তিনি চান তার বাবার হত্যাকারীদের ধীর এবং যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু হোক, এবং তিনি কোটে এবং এলশেখকে কাঠগড়ায় দেখতে চান। কিন্তু এ দুজনের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করা করা হয়েছে বলে বিবিসি বলছে। তাহলে এদের বিচার হবে কোথায়? বলা হচ্ছে, এই দুই আইএস সদস্যকে হয়তো গুয়ানতানামো বে'-র মার্কিন সামরিক বন্দীশিবিরে পাঠানো হতে পারে। অথবা হয়তো জেমস ফোলি, পিটার কাসিগ এবং স্টিভ সটলফের মতো মার্কিন নাগরিকদের হত্যার অভিযোগে আমেরিকার আদালতেও বিচার হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা দফতর বলেছে, তারা এখনো বিকল্পগুলো বিবেচনা করছে। গুয়ানতানামো বে বন্দীশিবির অথবা তাদের হয়তো দি হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতেও তোলা হতে পারে - যে আদালতে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং আগ্রাসনের বিচার হয়। তবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অনুরোধ ছাড়া - শুধু মাত্র কোন দেশ বিচার না করলে বা করতে অক্ষম হলেই দি হেগে কারো বিচার হতে পারে। আইএস যাদের শিরশ্ছেদ করেছিল তাদের মধ্যে দুজন হলেন জাপানি নাগরিক - হারুনা ইউকাওয়া এবং সাংবাদিক কেনজি গোতো। এ কারণে জাপানের মাটিতেও তাদের বিচার হতে পারে। অথবা এমনও হতে পারে যে তারা হয়তো সিরিয়াতেই রয়ে যাবে। কিন্তু সেখানকার পরিস্থিতি এমন যে কখন কি হয় কিছুই বলা যায় না। স্প্যানিশ সাংবাদিক জাভিয়ার এস্পিনোজা আইএসের হাতে আটক থাকার সময় তাকে হত্যা করার ভয় দেখানো হয়েছিল। তিনি বলছেন, এদের বিচার কোথায় হলো তাতে কিছু আসে যায় না। বিচার হলেই হলো। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: উপদ্রব আর শিশুদের বিরক্তির কারণ সৌদি মসজিদ? প্রেম, বিয়ে - অতপর বন্দী আর শঙ্কার জীবন কেন মাশরাফিকে টি২০-তে ফেরাতে চায় বিসিবি? মুরগি নেই, তাই কেএফসির শত শত দোকান বন্ধ সিরিয়ায় গত মাসে ধরা পড়া ইসলামিক স্টেটের দুই ব্রিটিশ জিহাদিকে কি গুয়ানতানামোয় পাঠানো হবে? নাকি তাদের বিচার হবে? তা যদি হয় কোথায় হবে? আমেরিকায় না আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে? +text: বাংলাদেশ থেকে কয়েকটি আন্তর্জাতিক রুটে বিমান চলাচল শুরু হয়েছে। তারপরেও অনেকে বিশেষ ফ্লাইটে নানা দেশে যাতায়াত করছেন। যেসব দেশে বাংলাদেশিরা সচরাচর বেশি যাতায়াত করে, সেসব দেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে এখন কী অবস্থা রয়েছে? ভারত: বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি মানুষ ভারত যায়। বাংলাদেশের মানুষ ব্যবসা, চিকিৎসা এবং প্রমোদ ভ্রমণের জন্য ভারতে যায়। কিন্তু ভারতের সাথে বাংলাদেশের সবগুলো স্থল বন্দর এখন মানুষ আসা-যাওয়ার জন্য বন্ধ রয়েছে। এছাড়া ভারতে সব ধরণের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও বন্ধ রয়েছে। জুলাই মাসের মাঝামাঝি থেকে কিছু দেশের সাথে ভারতের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট যোগাযোগ শুরু হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে দেশটির বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম। ধারণা করা হচ্ছে যাতায়াত একেবারে উন্মুক্ত করা না হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভ্রমণের বিষয়টি অগ্রাধিকার পেতে পারে। এখনও পর্যন্ত সরকারি কোন ঘোষণা আসেনি। সিঙ্গাপুর: সিঙ্গাপুর সরকার দেশের অর্থনীতি এবং জীবনযাত্রা ধীরে-ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় আনার কাজ শুরু করেছে। তবে যারা স্বল্প সময়ের জন্য সিঙ্গাপুর ভ্রমণে যেতে চান তাদের ক্ষেত্রে এখনো বাধা রয়েছে। সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী স্বল্প সময়ের জন্য যারা সিঙ্গাপুর ভ্রমণ করতে চান তাদের জন্য একটি উপায় আছে। যারা জরুরি ব্যবসা কিংবা অফিসিয়াল কাজে সিঙ্গাপুর যেতে চান তাদের জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থাটিকে বলা হয় গ্রিন/ফাস্ট লেন অ্যারেঞ্জমেন্ট। এর আওতায় একটি সেফ ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করতে হবে। এটি ছাড়া সিঙ্গাপুরে ঢোকা যাবেনা। এছাড়া সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষের বিশেষ অনুমোদন নিয়ে স্বল্প সময়ের জন্য সেখানে যাওয়া যাবে। যেসব বিদেশী নাগরিক স্বল্প সময়ের জন্য সিঙ্গাপুর সফর করবেন তাদের জন্য কিছু নির্দেশনা দেয়া আছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে। ১৭ই জুন থেকে যারা সিঙ্গাপুরে যাবেন স্বল্প সময়ের জন্য তাদের জন্য সিঙ্গাপুরে কোভিড-১৯ টেস্ট করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে সফরকারীকে টেস্টের খরচ বহন করতে হবে। থাইল্যান্ড: থাইল্যান্ডে যারা ব্যবসার কাজে যাবেন তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। এছাড়া যারা চিকিৎসার জন্য যাবেন তাদের ক্ষেত্রেও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে থাইল্যান্ড। এর পাশাপাশি রয়েছে দক্ষ কর্মী এবং বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী। তবে যারা থাইল্যান্ড যাবেন তাদের ক্ষেত্রে 'কোভিড-১৯ মুক্ত' সনদ থাকতে হবে এবং পাশাপাশি তাদের থাইল্যান্ডে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। এই শর্ত মেনে থাইল্যান্ড ভ্রমণের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে এরই মধ্যে ৫০ হাজার মানুষ রেজিস্ট্রেশন করেছে। বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ প্রতিবছর পর্যটনের জন্য থাইল্যান্ড যায়। তবে দেশটি আপাতত পর্যটন ভিসা দিচ্ছে না। ইউরোপ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো বিদেশীদের আগমনের জন্য তাদের বিমান চলাচল শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশে এই তালিকায় নেই। এছাড়া আমেরিকা, ব্রাজিল এবং রাশিয়াও এই তালিকায় নেই। কয়েকটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে: ১. যেসব দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার কম। অর্থাৎ যেসব দেশে এক লাখ মানুষের মধ্যে ১৬ জনের কম সংক্রমিত হয়েছে সেসব দেশের নাগরিকদের ভ্রমণের অনুমতি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২. যেসব দেশে সংক্রমণের হার নিচের দিকে ৩. যেসব দেশে সামাজিক দূরত্বের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে করোনাভাইরাস: সুস্থ হয়ে উঠতে কতদিন লাগে? কাদের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে আর কাদের জন্য জরুরি নয় করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় যাদের স্বাস্থ্য সমস্যা আছে তাদের কী করতে হবে মালয়েশিয়া: শুধু পর্যটনের জন্য বিদেশ থেকে এখন মালয়েশিয়া যাওয়া বন্ধ আছে। বর্তমানে স্পাউস, বিজনেস এবং প্রফেশনাল ভিসায় মালয়েশিয়ায় যাবে। তবে যাওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট দেশে মালয়েশিয়ার দূতাবাসের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে অনাপত্তিপত্র সংগ্রহ করতে হবে। মালয��েশিয়া ঢোকার আগে বিমানবন্দরে তাদের অবশ্যই 'কোভিড-১৯ মুক্ত' সনদ দেখাতে হবে। যদি সেটি না থাকে তাহলে মালয়েশিয়ার বিমানবন্দরে কোভিড-১৯ টেস্ট করাতে হবে। সেজন্য বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় পাঁচ হাজার টাকা লাগবে। যুক্তরাজ্য: যুক্তরাজ্যের সাথে বাংলাদেশের বিমান চলাচল এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ বলছে ঢাকা থেকে লন্ডন যাতায়াতের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ মুক্ত সনদের প্রয়োজন নেই। তবে একটি হেলথ ডিক্লারেশন ফর্ম পূরণ করতে হবে। এছাড়া লন্ডনে পৌঁছানোর পর ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। তবে করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর আগে যারা ভিসা পেয়েছিলেন তারাই এখন যেতে পারছেন। অতি প্রয়োজনীয় না হলে মহামারির এই সময় নতুন করে ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য এখনো কোন বিধি-নিষেধ নেই। ঢাকা থেকে যেসব এয়ারলাইন্স ফ্লাইট চালু করেছে তাদের মাধ্যমে ভ্রমণ করা যাবে। ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের একটি সূত্র জানিয়েছে করোনাভাইরাস মহামারির সময় নতুন কোন ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে না। যাদের পুরনো ভিসা আছে শুধু তারাই ভ্রমণ করতে পারবে। প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ ব্যবসা, চিকিৎসা এবং ভ্রমণের জন্য পৃথিবীর নানা দেশে যায়। করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের যাতায়াত বন্ধ রেখেছে। +text: স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে মেট্রো টিভিতে দেখানো হয়েছে- ডুবুরিরা প্লাস্টিকের বক্সের মধ্যে উদ্ধার করা 'ব্ল্যাক বক্স'টিকে জাহাজে তুলছেন। সোমবার ১৮৯ জন যাত্রী নিয়ে লায়ন এয়ারের ওই বিমানটি বিধ্বস্ত হয় । জাকার্তা থেকে উড্ডয়নের ১৩ মিনিটের মধ্যে কন্ট্রোল রুমের সাথে বিমানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং পরে দেখা যায় সেটি জাভা সাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে যে, আরোহীদের সবাই হয়তো মারা গেছেন। বিমান ও তার আরোহীদের খোঁজে পানির নিচে ড্রোন এবং শব্দ সনাক্তকারী যন্ত্র দিয়েও অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। যদিও এখন পর্যন্ত বিমানটি বিধ্বস্ত হবার সঠিক কারণ জানা যায়নি। এমনকি কোনো যাত্রীর দেহও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে উদ্ধারকারীরা ব্ল্যাক বক্স উদ্ধারের আগে জাভা সাগরের বুক থেকে কিছু ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করেছেন। এর মধ্যে আরোহীদের ব্যবহার করা কিছু ব্যক্তিগত জিনিসও রয়েছে। ইন্দ��নেশিয়ার ব্যাংকা দ্বীপের প্যাঙ্কাল পিন্যাংয়ের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল বিমানটি। সাগরতলে খুঁজে পাওয়া গেল ব্ল্যাক বক্স হেনড্রা নামের একজন ডুবুরি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সাগর তলের কাদা ও আবর্জনা সরিয়ে ব্ল্যাক বক্সটি উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় চ্যানেল মেট্রো টিভিতে দেখানো হয়েছে যে ব্ল্যাক বক্সটি উদ্ধারের পর সেটাকে একটা প্লাস্টিক বক্সের মধ্যে করে উদ্ধারকারী জাহাজে তুলে আনা হচ্ছে। ডুবুরি দলের সদস্য হেনড্রা বলেছেন, কমলা রংয়ের ব্ল্যাক বক্সটি তারা অক্ষত অবস্থাতেই পেয়েছেন। তবে সেটি ককপিট ভয়েস রেকর্ডার নাকি ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার তা নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি। কী কারণে প্রায় নতুন উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছিল, ব্ল্যাক বক্স পেলে সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া সম্ভব হবে বলে এর আগে জানিয়েছিলেন ইন্দোনেশিয়ার কর্মকর্তারা। ব্ল্যাক বক্স কী? প্রথমেই বলা ভালো, ব্ল্যাক বক্স নামে ডাকা হলেও এর আসল নাম হলো ফ্লাইট রেকর্ডার। যেটি বিমান চলাচলের সর্বশেষ সব তথ্য রেকর্ড করে রাখে। এভিয়েশন বা বিমান নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা কিন্তু এটিকে ব্ল্যাক বক্স নামে ডাকেন না, তারা বলেন ফ্লাইট রেকর্ডার। নামে ব্ল্যাক বক্স কিন্তু আসলে কালো কোন বস্তু নয়। বরং এর রং অনেকটা কমলা ধরণের। এটি অত্যন্ত শক্ত ধাতব পদার্থ দিয়ে তৈরি একটি বাক্স, যা পানি, আগুন, চাপ বা যেকোনো তাপমাত্রায় টিকে থাকে। এটি দুইটি অংশের সমন্বয়ে আসলে একটি ভয়েস রেকর্ডার। বিমান চলাচলের সময় সব ধরণের তথ্য এটি সংরক্ষণ করে রাখে। আরো পড়তে পারেন: গত কয়েক বছরের বিমান দুর্ঘটনার বৃত্তান্ত একটি নতুন বিমান কীভাবে বিধ্বস্ত হলো? ইন্দোনেশিয়ার বিমান দুর্ঘটনা: নিখোঁজ এক আরোহী সম্পর্কে যেভাবে জানা গেল ব্ল্যাক বক্স নামে ডাকা হলেও এটির রং আসলে উজ্জ্বল কমলা এর মধ্যে দুই ধরণের তথ্য সংরক্ষিত থাকে। একটি হলো ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডার বা এফডিআর, যেটি বিমানের ওড়া, ওঠানামা, বিমানের মধ্যের তাপমাত্রা, পরিবেশ, চাপ বা তাপের পরিবর্তন, সময়, শব্দ ইত্যাদি নানা বিষয় নিজের সিস্টেমের মধ্যে রেকর্ড করে রাখে। ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (সিভিআর) নামের আরেকটি অংশে ককপিটের ভেতর পাইলদের নিজেদের মধ্যের কথাবার্তা, পাইলটদের সঙ্গে বিমানের অন্য ক্রুদের কথা, ককপিট এর সঙ্গে এয়ার কন্ট্রোল ট্রাফিক বা বিভিন্ন বিমান বন্দরের সঙ্গে রেডিও যোগাযোগের কথা রেকর্ড হতে থাকে। ফলে কোন বিমান দুর্ঘটনায় পড়লে এই ব্ল্যাক বক্সটি খুঁজে বের করাই হয়ে পড়ে উদ্ধারকারীদের প্রধান লক্ষ্য। কারণ এটি পাওয়া গেলে সহজেই ওই দুর্ঘটনার কারণ বের করা সম্ভব হয়। বাক্সটির বক্স উজ্জ্বল কমলা হওয়ায় সেটি খুঁজে পাওয়া সহজ হয়। সমুদ্রের তলদেশেও ৩০দিন পর্যন্ত ব্লাক বক্স অক্ষত থাকতে পারে। ব্ল্যাক বক্সের আবিষ্কার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এ ধরণের যন্ত্র তৈরির উদ্যোগ প্রথম নেয়া হয়। তবে সত্যিকারের ব্ল্যাক বক্সের কাজ শুরু হয় ১৯৫০এর দশকের গোড়ার দিকে। অস্ট্রেলীয় সরকারের এয়ারোনটিকাল রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে কেমিস্ট ডেভিড ওয়ারেন এটি আবিষ্কার করেন। ১৯৬২ সালের ২৩শে মার্চ প্রথম অস্ট্রেলিয়ার একটি বিমানে পরীক্ষামূলক ভাবে এটির ব্যবহার করা হয়। আরো খবর: বিমানের 'ব্ল্যাক বক্স' আসলে কী? চলাফেরা করতে পারবেন প্যারালাইজড রোগীরাও? কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কি ধর্মীয় সহিংসতা বন্ধ করতে পারবে? ফ্লাইট রেকর্ডার দুর্ঘটনার পরেও কীভাবে টিকে থাকে ব্ল্যাক বক্স? এটি অত্যন্ত শক্ত ধাতব পদার্থ দিয়ে তৈরি করা হয়। কয়েকটি লেয়ার দিয়ে এটি এমনভাবে তৈরি করা হয় যে, প্রচণ্ড উত্তাপ, ভাঙচুর, পানি বা প্রচণ্ড চাপের মধ্যেও সেটি টিকে থাকতে পারে। স্টেইনলেস স্টিল বা টাইটানিয়ামের খোলস দিয়ে বক্সের আবরণ তৈরি করা হয়। টিকে থাকার অনেকগুলো পরীক্ষায় পাস করার পরেই ব্ল্যাক বক্সগুলোকে বিমানে সংযোজন করা হয়। ব্ল্যাক বক্স কিভাবে তথ্য পায়? আধুনিক ব্ল্যাক বক্সগুলোয় ২৫ ঘণ্টা পর্যন্ত বিমানের ফ্লাইট ডাটা ধারণ করে রাখতে পারে। এর ভেতর অনেকগুলো মেমরি চিপ পাশাপাশি সাজানো থাকে। এখানে তথ্য সরবরাহ করার জন্য বিমানের বিভিন্ন জায়গায় অনেক সেন্সর লাগানো থাকে। একটি বিধ্বস্ত বিমানের ব্ল্যাক বক্স এসব সেন্সর অনবরত বিমানের গতি, তাপমাত্রা, সময়, ভেতর বাইরের চাপ, উচ্চতা ইত্যাদি বিমানের সামনের দিকে থাকা ফ্লাইট ডাটা অ্যাকুইজিশন ইউনিট নামের একটি অংশে পাঠাতে থাকে। সেখান থেকে সেসব তথ্য চলে যায় ব্ল্যাক বক্সের রেকর্ডারে। পাইলট, কো পাইলট, ক্রুদের বসার কাছাকাছি জায়গায় অনেকগুলো মাইক্রোফোন বসানো থাকে। তাদের সব কথাবার্তা, নড়াচড়া বা সুইচ চাপা ইত্যাদি সব এসব মাইক্রোফোনে রেকর্ড হতে থাকে। সেগুলো এ্যাসোসিয়েটেড কন্ট্রোল ইউনিট নামের একটি ডিভাইসে পাঠায়। এরপর সেসব তথ্য ব্ল্যাক বক্সে গিয়ে জমা হয়। কিন্তু ব্ল্যাক বক্সে কত তথ্য থাকে? আসলে বিমান চলাচলের একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ব্ল্যাক বক্স তথ্য সংরক্ষণ করে রাখে। মূলত শেষের দিকে তথ্য এটিতে জমা থাকে। একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর আগের তথ্য মুছে যেতে থাকে আর নতুন তথ্য জমা হয়। ফলে দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সর্বশেষ তথ্য এটিতে পাওয়া যায়। কিভাবে তথ্য উদ্ধার করা হয়? ব্ল্যাক বক্সটি পাওয়ার পরেই বিমান দুর্ঘটনা তদন্তকারী, বিমান সংস্থা, এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি দল তৈরি করা হয়। সেই সঙ্গে প্রযুক্তিবিদদের সমন্বয়ে তারা ব্ল্যাক বক্স থেকে তথ্য উদ্ধারের কাজটি শুরু করেন। বক্সের অবস্থার উপর নির্ভর করে কত তাড়াতাড়ি তথ্য পাওয়া যাবে। সেটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলে অনেক সময় মাসের পর মাসও তথ্য উদ্ধারে সময় লেগে যায়। কারণ বিশেষজ্ঞদের খেয়াল রাখতে হয়, যাতে তথ্য উদ্ধার করতে গিয়ে কিছু মুছে না যায় বা মেমরি চিপগুলো ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। দুর্ঘটনার পর উদ্ধার তৎপরতা ব্ল্যাক বক্সের শক্তি একেকটি ব্ল্যাক বক্সের পাওয়ার বা শক্তির যোগান দেয় দুইটি জেনারেটরের যেকোনো একটি। এসব সোর্স থেকে এই বক্সটি অব্যাহতভাবে শক্তির সরবরাহ পেয়ে থাকে। ব্ল্যাক বক্সের নাম ব্ল্যাক বক্স কেন? এটির সঠিক উত্তর আসলে কারো জানা নেই। অনেকে মনে করেন, আগে এটির রং কালো রঙের ছিল, তাই হয়তো তখন থেকে এর নাম ব্ল্যাক বক্স। আবার অনেকে বলেন, দুর্ঘটনার, মৃত্যু ইত্যাদির কারণে এটিকে ব্ল্যাক বক্স ডাকা হয়। অনেকের ধারণা, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নতুন আবিষ্কৃত যেকোনো ধাতব প্রযুক্তিকে কালো রঙ দিয়ে ঢেকে রাখা হতো। এ কারণেও এটির নাম ব্ল্যাক বক্স হতে পারে। ইন্দোনেশিয়ায় বিধ্বস্ত লায়ন এয়ার বিমানের 'ব্ল্যাক বক্সে'র সন্ধান পেয়েছে ডুবুরিরা। +text: আর-টু: স্বয়ং-চালিত এই গাড়ি ব্যবহার করা হবে মানুষের বাড়িতে মালামাল পৌঁছে দেয়ার জন্য। নিউরো নামের একটি কোম্পানি এই গাড়িটি তৈরি করেছে মূলত একটি ডেলিভারি ভ্যান হিসেবে। গাড়িটির নাম দেয়া হয়েছে আর-টু। এটি টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টনে পরীক্ষা করা হবে। এই প্রথম কোন চালকবিহীন গাড়ি রাস্তায় নামছে, যেটিতে মানুষের বসার বা চালানোর কোন ব্যবস্থাই রাখা হয়নি। এপর্যন্ত যত চালকবিহীন গাড়ি তৈরি করা হয়েছে, তার স��কটিতেই এমন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যাতে দরকার হলে একজন চালক গাড়িটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পারে। আর-টু সেদিক থেকে ব্যতিক্রম। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন মন্ত্রী এলেইন চাও বলেছেন, যেহেতু গাড়িটির সর্বোচ্চ গতি ঘন্টায় মাত্র ২৫ মাইল, তাই এধরনের নিয়ম এই গাড়িটির ক্ষেত্রে প্রয়োগ করার কোন মানে হয় না। কিন্তু ডিপার্টমেন্ট অব ট্রান্সপোর্ট বলেছে, এটি যখন রাস্তায় পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হবে, তখন এর ওপর অনেক বেশি নজরদারির ব্যবস্থা থাকবে। এই আর-টু কখন কোথায় পরীক্ষা করা হচ্ছে তা সেখানকার লোকজনকে জানাতে হবে। নিউরোর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ডেভ ফারগুসন একটি ব্লগ পোস্টে জানিয়েছেন, চালকবিহীন গাড়ির ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্তটি একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। "গাড়ি চলাচলের বিদ্যমান নিয়মকানুনের অবশ্যই আধুনিকায়ন দরকার, কারণ কোন চালক বা আরোহী ছাড়া একটি গাড়ি রাস্তায় চলবে, এটা কখনো আমাদের কল্পনাতেই ছিল না। কাজেই 'স্বয়ং-চালিত গাড়ির প্রযুক্তি' নিয়ে যাতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো যায়, যাতে এগুলো নিরাপদে ব্যবহার করা যায়, সেজন্যে এই শিল্পের সবার কাজ করা উচিৎ।" জেনারেল মোটরস একই ধরনের একটি স্বয়ং-চালিত গাড়ি তৈরি করছে। তারাও তাদের গাড়িটির পরীক্ষার জন্য অনুমতি চেয়েছে। নতুন ডিজাইন রাডার, থার্মাল ইমেজিং এবং ৩৬০-ডিগ্রি ক্যামেরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে পথ চলবে আর-টু নিউরোর গাড়িগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে কোন চালক বা আরোহী কেউই থাকবে না। তাদের আর-টু ডিজাইনের গাড়িতে কোন সাইড ভিউ মিরর বা উইন্ডস্ক্রীনও নেই। তবে এটির পেছনে একটি ক্যামেরা থাকবে, যাতে গাড়ির পেছনের রাস্তার ওপর সর্বক্ষণ নজর রাখা যায়। অন্যান্য খবর: করোনাভাইরাস: রুশ মিডিয়ায় মার্কিন ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত মিজানুর রহমান আজহারি কি সত্যি মালয়েশিয়া গেছেন? শামীমা বেগমকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব চাইতে বলা হলো গাড়িটির আকৃতি ডিমের মতো, যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ গাড়ির চেয়ে এটির আকার ছোট। এটিতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত দুটি কম্পার্টমেন্ট আছে, যাতে মালামাল রাখা যাবে। দরোজাগুলো খুলবে উপরের দিকে। যখন এটি কারও বাড়িতে মালামাল ডেলিভারি দিতে যাবে, তখন প্রাপককে একটি কোড দিয়ে দরোজা খুলতে হবে। আর-টু রাস্তায় চলাচলের জন্য রাডার, থার্মাল ইমেজিং এবং ৩৬০-ডিগ্রি ক্যামেরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে। নিউরো এরই মধ্যে ঘোষণা করেছে যে হিউস্টনে যখন পরীক্ষামূলকভাবে আর-টু চালানো হবে, তখন এটি ডোমিনো'স পিৎজার পিৎজা থেকে শুরু করে সুপারমার্কেট চেন ক্রুগার বা ওয়ালমার্টের মালামাল ডেলিভারি দেবে। নিউরো নামের কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠা করেছেন গুগলের দুজন সাবেক প্রকৌশলী। জাপানি প্রতিষ্ঠান 'সফটব্যাংক' এটিতে বিনিয়োগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে এই প্রথম একটি স্বয়ং-চালিত গাড়ি রাস্তায় পরীক্ষামূলকভাবে চালানোর অনুমতি দেয়া হয়েছে, যাতে কোন স্টিয়ারিং হুইল নেই, ব্রেক কষার পেডাল নেই। এমনকি কোন সাইডভিউ মিররও নেই। +text: লকডাউনের ফলে বাংলাদেশে অর্থনীতির চাকা থমকে গেছে। সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ঘোষিত 'সাধারণ ছুটি' তিন সপ্তাহ অতিবাহিত হওয়ার পরে পুরো দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হলো। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অনেকে মনে করেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার এখনো পুরোমাত্রায় শুরু হয়নি, যদিও আক্রান্তের সংখ্যা শুক্রবার পর্যন্ত ১৮৩৮জন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী সনাক্ত হবার ১৭ দিন পরে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল সংক্রমণ ঠেকানো। কিন্তু গত এক এক সপ্তাহের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা দুটোই বেশ দ্রুত গতিতে বাড়ছে। এমন অবস্থায় আগামী ২৫শে এপ্রিল পর্যন্ত বিধিনিষেধ বজায় থাকবে। গ্রামাঞ্চলের কৃষক দিশেহারা কিন্তু এরই মধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ তাদের জীবন-জীবিকা নিয়ে রীতিমতো সংগ্রাম করছে। উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে না পারায় গ্রামাঞ্চলের কৃষক এখন দিশেহারা। মুন্সিগঞ্জের সবজি চাষি আখতার দেওয়ান বলছিলেন, বিক্রি নেই তাই উৎপাদিত সবজি মাঠেই পড়ে আছে। "মাল বিক্রি করতে পারতেছি না। যদি ঢাকায় মাল পাঠাইতে না পারি,তাহলে মাঠ থেইকা সবজি তুলে লাভ কী?" মি: দেওয়ান বলেন। একই অবস্থায় আছেন সাভারের রাজিয়া সুলতানা। তার ফার্মে উৎপাদিত দুধ মিষ্টির দোকানে বিক্রি হতো। লকডাউনের কারণে এসব দোকান বন্ধ থাকায় এখন রাজিয়া সুলতানার মাথায় হাত। "দুধের কেজি যেখানে ৬০ টাকা ছিল, সেইটা এখন ৩০ টাকা নেমে আসছে," বলছিলেন রাজিয় সুলতানা। পৃথিবীর বহু দেশ এখন অর্থনীতির চেয়ে জনস্বাস্থ্যকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। লকডাউনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। অনেকে ত্রানের জন্য রাস্তায় ভিড় করেছেন। অর্থনীতি না জীবন? আমেরিকা এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে দেখা গেছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন পদ্ধতি কাজ করেছে। এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য এটিই এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে কার্যকরী পন্থা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশের সরকার জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে বিধি-নিষেধ আরোপ করলেও মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতির ভীত নড়ে গেছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। কিন্তু তারপরেও কোন উপায় দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা চিকিৎসকরা। ঢাকার বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসক পূরবী দেবনাথ বলছিলেন, অর্থনীতির বিবেচনায় এ মুহূর্তে স্বাস্থ্য ঝুঁকিকে হালকা করে দেখার মোটেও সুযোগ নেই। তিনি বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। সেজন্য সংক্রমণ ঠেকাতে বাংলাদেশের জন্য লকডাউন পদ্ধতি অন্যদের চেয়ে বেশি কার্যকর। "অর্থনীতির চেয়ে জীবন অনেক গুরুত্বপূর্ণ," বলছিলেন পূরবী দেবনাথ। লকডাউন মানে অর্থনৈতিক তৎপরতা স্থবির ভ্রমণে সংক্রমণের ঝুঁকি বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মনে করেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে 'লকডাউন' কিছুটা হলেও কাজে লেগেছে। কিন্তু এই 'লকডাউন' পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি বলে হতাশা প্রকাশ করেন এক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সে কর্মকর্তা বলেন, লকডাউনের মধ্যেও বিভিন্ন আক্রান্ত এলাকা থেকে মানুষজন দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করেছে। ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়েছে বেশি। তাছাড়া দেশের বিভিন্ন জায়গায় ত্রাণের বিতরণের জন্য যেভাবে মানুষ জড়ো করা হয়েছে সেটিও সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করেছে। এছাড়া বিভিন্ন হাট-বাজারে অনেকেরই সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি মেনে চলেননি। শ্রমিকদের অনেকেই করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশংকা নিয়ে কাজ করছেন। গার্মেন্টসকে অপেক্ষা করতে হবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মানুষকে সংক্রমণের হাত থেকে যেমন বাঁচাতে হবে তেমনি অর্থনীতির কথাও চিন্তা করতে হবে। বাংলাদেশে উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অর্থনীতিবিদ নাজনীন আহমেদ বলছেন, স্বাস্থ্য বিধি মেনে কৃষি এবং ক্ষুদ্র শিল্প থেকে উৎপাদিত পণ্য পরিবহন এবং বাজারজাতকরণের উপায় খুঁজে বরে করতে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন বোরা ধানের মওসুম। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শস্য। এ ধান কিভাবে মাঠ থেকে তুলে আনা ���ায় সেটি ভাবতে হবে বলে নাজনীন আহমেদ মনে করেন। গার্মেন্টস শিল্পের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এখনো সেগুলো খুলে দেবার সময় আসেনি। এজন্য আরো তিন থেকে চার সপ্তাহ অপেক্ষা করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। গার্মেন্টস কারখানা খোলার পর শ্রমিকদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ তৈরি করতে হবে। "ওনারা যে প্রোডাক্টটা ৫০০ জনকে দিয়ে তৈরি করান, সেখানে ৫০০ জন এখন নিয়োগ করলে হবে না,'' নাজনীন আহমেদ বলেন। ''যেভাবে ওনারা ঘন-ঘন বসেন সেটা হলে চলবে না। এক সিট বা দুই সিট বাদ দিয়ে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে দূরত্ব রেখে যাতে ওয়ার্কাররা বসতে পারে, '' তিনি বলেন। প্রয়োজন হলে ২৫ এপ্রিলের পরেও দেশজুড়ে লকডাউনের সময়সীমা আরো বাড়ানোর পরামর্শ দেয়া হতে পারে বলে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন। বাংলাদেশে জেলাভিত্তিক কোভিড-১৯ সংক্রমণের মানচিত্র করোনাভাইরাস নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরিতে অগ্রগতি কতদূর? তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক শুক্রবার এক ভিডিও বার্তায় দাবি করেছেন, আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সবাই যদি ঘরে অবস্থান করে তাহলে তার ভাষায় 'করোনাযুদ্ধে জয়লাভ' করা সম্ভব হবে। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এ দাবির পক্ষে কোন যুক্তি সংগত কারণ দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করেন বাংলাদেশে, করোনাভাইরাসের বিস্তার হয়তো মে মাসের শেষ পর্যন্ত চলতে পারে। মাত্র দুই সপ্তাহরে মধ্যেই বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি বেশ দ্রুত বদলে যেতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে এরই মধ্যে পুরো দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ। +text: ইসরায়েলের সঙ্গে আমিরাতের গোপনে এই আলোচনা চলছিল অনেকদিন ধরে। নিউইয়র্ক টাইমসের বিখ্যাত কলামিস্ট টমাস এল ফ্রিডম্যান এভাবেই বর্ণনা করেছেন গতকাল ইসরায়েল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের ঘোষণাকে। কেন তিনি এটিকে ভূ-রাজনৈতিক ভূমিকম্প বলছেন, লেখায় সেটি ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। "আনোয়ার সাদাতের জেরুসালেমে যাওয়ার মতো কোন ঘটনা এটি নয়- কারণ আরব এবং ইসরায়েলিদের মধ্যে প্রথম সম্পর্ক খুলে যাওয়ার সেই বড় ঘটনার সমকক্ষ আর কিছুই হতে পারে না�� হোয়াইট হাউসের লনে ইতজাক রাবিনের সঙ্গে ইয়াসির আরাফাতের করমর্দনের সঙ্গেও এর তুলনা চলে না। কারণ ইসরায়েলি আর ফিলিস্তিনিদের মধ্যে প্রথম প্রকাশ্য সমঝোতার সমান আর কিছুই হতে পারে না।" তবে টমাস এল ফ্রিডম্যানের মতে, ইসরায়েল আর সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের এই ঘটনা উপরের দুটি ঘটনার খুবই কাছাকাছি। এ ধরণের ঘটনার স্কোরকার্ডে এটির অবস্থান তিন নম্বরে। ইসরায়েলের সঙ্গে এর আগে কেবল মাত্র দুটি আরব রাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক হয়েছে। প্রথমটি মিশরের সঙ্গে, ১৯৭৯ সালে। এই চুক্তি করার পরিণামে মিশরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাতকে প্রাণ দিতে হয়েছে। দ্বিতীয়টি জর্ডানের সঙ্গে, ১৯৯৪ সালে। আকস্মিক ঘোষণা হামাস: ‌'আমাদের পিঠে ওরা ছুরি মেরেছে' বৃহস্পতিবার যেভাবে ইসরায়েল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের ঘোষণাটি এসেছিল, তা সবাইকে হতচকিত করেছে। এতে মধ্যস্থতা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনিই প্রথম এক বিবৃতিতে এই ঘটনা জানান। পুরো আলোচনাটি চলছিল বেশ গোপনে। এতটাই গোপনে যে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যন্ত নাকি এ বিষয়ে কিছু জানতেন না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং আবুধাবির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন জায়েদের মধ্যে এই চুক্তিকে এক 'ঐতিহাসিক মূহুর্ত' বলে বর্ণনা করেছেন। ওভাল অফিসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, "বরফ যেহেতু গলেছে এখন আমি আশা করবো আরও অনেক আরব এবং মুসলিম দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতকে অনুসরণ করবে।" প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই ঘোষণা দেয়ার পরপরই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু হিব্রুতে টুইট করেন, "এক ঐতিহাসিক দিন‍।" যেসব বিষয়ে সমঝোতা সামনের দিনগুলিতে ইসরায়েল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিনিধিদল নিয়মিত মিলিত হবেন নানা বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করতে। এর মধ্যে বিনিয়োগ, পর্যটন, দুদেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট, নিরাপত্তা, টেলিযোগাযোগ, প্রযুক্তি, জ্বালানি, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতি, পরিবেশ, দুদেশে পরস্পরের দূতাবাস স্থাপন থেকে কিছুই বাদ থাকছে না। দুটি বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে যতরকমের সম্পর্ক থাকার কথা, মনে হচ্ছে সেরকম এক সম্পর্কের দিকে যাচ্ছে দুই দেশ। নেতানিয়াহু: 'পশ্চিম তীর ইসরায়েলের অংশ করার পরিকল্পনা এখনো আছে' এক যুক���ত বিবৃতিতে ইসরায়েল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত জানিয়েছে, "মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে গতিশীল দুটি সমাজ এবং অগ্রসর দুটি অর্থনীতির মধ্যে এই সরাসরি সম্পর্কের সূচনা পুরো অঞ্চলকে বদলে দেবে। এর ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়বে, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ত্বরান্বিত হবে এবং মানুষে-মানুষে সম্পর্ক তৈরি হবে।" একটি আরব রাষ্ট্রের সঙ্গে এই সম্পর্কের বিনিময়ে ইসরায়েল পশ্চিম তীরের যেসব ফিলিস্তিনি এলাকা তার সীমানায় ঢোকানোর পরিকল্পনা করছিল, তা আপাতত স্থগিত রাখবে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আনওয়ার গারগাশ বলেছেন, ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়ার মাধ্যমে তার দেশ আসলে এক সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে, কারণ এর মাধ্যমে পশ্চিম তীরকে সংযুক্ত করার যে পরিকল্পনা নিয়ে ইসরায়েল আগাচ্ছিল, সেই 'টাইম বোমা' থামিয়ে দেয়া গেছে। আরও পড়ুন: সৌদি আরব-ইসরায়েল গোপন আঁতাতের কারণ কি ফিলিস্তিনি-ইসরায়েলি সংঘাতের মূলে যে দশটি প্রশ্ন ইসরায়েলের কাছে আরবরা কেন পরাজিত হয়েছিল? ইসরায়েলের সাথে কিছু আরব দেশের 'গোপন মৈত্রী'? ইসরায়েলি সরকার বলছে, পশ্চিম তীর সংযুক্ত করার পরিকল্পনা তারা বাদ দিচ্ছে না, স্থগিত রাখছে মাত্র। কিন্তু সংযুক্ত আরব আমিরাতের এই মন্ত্রী বলছেন, তারা মনে করেন এই সমঝোতার ফলে এই পরিকল্পনা কেবল স্থগিত নয়, পুরোপুরি থেমে যাচ্ছে। 'আমাদের পিঠে ছুরিকাঘাত' ফিলিস্তিনিরা সংযুক্ত আরব আমিরাতের এই পদক্ষেপকে 'বিশ্বাসঘাতকতা' হিসেবে দেখছে। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এর নিন্দা করে বলেছেন, "এটি জেরুসালেম, আল-আকসা এবং ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।" একজন উর্ধ্বতন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা হানান আশরাউই এই সমঝোতার নিন্দা করে বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে তলে তলে যেসব গোপন লেনদেন আর সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালাচ্ছিল, সেটা এবার প্রকাশ হয়ে গেল। তিনি আবুধাবির প্রিন্স মোহাম্মদকে উদ্দেশ্য করে বলেন, "নিজের বন্ধুর দ্বারা কেউ যেন এভাবে বিক্রি হয়ে না যান‍।" মাহমুদ আব্বাস: 'ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে‌' সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ফিলিস্তিনি দূতকে এরই মধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস বলেছে, এটি ফিলিস্তিনি জনগণের পিঠে ছুরিকাঘাত। ইরানও খুব কঠোর ভাষায় এই সমঝোতার নিন্দা করেছে। ইসরায়েলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থ���পনের সিদ্ধান্তকে ‌'বিপজ্জনক' এবং 'বোকামি' বলে বর্ণনা করে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণায়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ফিলিস্তিনদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতার জন্য ইউএই কখনোই ক্ষমা পাবেনা। খুবই কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে তুরস্কও। তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতের সম্পর্ক ছিন্ন করার হুমকি দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এরদোয়ান বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ হজম করা যায় না। তবে ইসরায়েলের মিত্র মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসি এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। ইসরায়েলের আরেক মিত্র জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেছেন, এই চুক্তির পর থমকে যাওয়া মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনা নতুন করে শুরু হতে পারে। মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির বিজয়? ডোনাল্ড ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতির বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে এই সমঝোতাকে এক টেলিভিশন ভাষণে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি পশ্চিম তীরের কিছু অংশ ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা স্থগিত রাখলেও তা বাতিল করেন নি, এই পরিকল্পনা এখনো আছে। অথচ সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং যুক্তরাষ্ট্র দেখাতে চাইছিল, এই সমঝোতার ফলে ইসরায়েলকে যেন এই কাজ থেকে বিরত রাখা যাবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, দুজনেই আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এই সমঝোতা থেকে কিছু ফায়দা তুলতে পারেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এটিকে তার পররাষ্ট্রনীতির এক বিরাট বিজয় হিসেবে দেখাতে চাইবেন। নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে তার ভাবমূর্তিকে চাঙ্গা করতে এরকম কিছু একটা দরকার। আর প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়ে যে বিপদের মধ্যে আছেন, সেখান থেকে মানুষের মনোযোগ অন্যদিকে সরানোর জ্ন্য এটিকে কাজে লাগাতে পারবেন। পশ্চিম তীরের বিরাট অংশকে ইসরায়েলের ভেতর ঢুকিয়ে ফেলার টোপ সেখানে বসতিস্থাপনকারীদের দিয়েছিলেন নেতানিয়াহু নিজেই। কিন্তু এর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে যেরকম চাপের মুখে পড়তে হচ্ছিল ইসরায়েলকে, কাজটা প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর জন্য কঠিন হয়ে পড়েছিল। ইসরায়েলের কট্টর দক্ষিণপন্থীদের সমর্থন ধরে রাখার জন্য আবার তিনি এই প্রতিশ্রুতি থেকে ফিরেও আসতে পারছিলেন না। ইউএই-র সঙ্গে এই চুক্তির পর এখন তিনি এই পরিকল্পনা একদিকে স্থগিত রাখতে পারবেন, অন��যদিকে দেশটির মধ্যপন্থীদেরও সমর্থন পাওয়ার আশা করতে পারবেন। "একটি ভূ-রাজনৈতিক ভূমিকম্প মাত্রই আঘাত হেনেছে মধ্যপ্রাচ্যে" (এ জিওপলিটিক্যাল আর্থকোয়েক জাস্ট হিট দ্য মিডল ইস্ট)। +text: ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মাইক পেন্স নির্বাচন কি পিছিয়ে দেয়া যাবে? কে বা কারা এ পরিবর্তন করতে পারেন? যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন প্রেসিডেন্ট নিজে করতে পারবেন না। সেটা করতে পারেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা। নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে দিতে হলে মার্কিন কংগ্রেসের উভয় কক্ষে এ প্রস্তাবটিকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হবে। বিশ্লেষকরা বলেন - এমন সম্ভাবনা কম, কারণ নিম্নকক্ষ অর্থাৎ মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে ডেমোক্র্যাটদের। তারিখ পিছিয়ে দিলে আরো অনেক কিছু ঘটতে পারে ধরা যাক কংগ্রেসের উভয় কক্ষের সদস্যরা নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে দেবার পক্ষে ভোট দিলেন। কিন্তু মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী একজন প্রেসিডেন্টে প্রশাসনের আয়ু হচ্ছে ঠিক চার বছর। তাই সংবিধান মোতাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ক্ষমতার মেয়াদ আপনা আপনি শেষ হয়ে যাবে ২০২১ সালের ২০শে জানুয়ারি দুপুর বেলা। তাই নির্বাচনের তারিখ পাল্টালে সংবিধানেও পরিবর্তন আনতে হবে। আর তা করা যাবে তখনই, যখন দু-তৃতীয়াংশ আইনপ্রণেতা, বা রাজ্য পর্যায়ের আইনসভা এবং তার পর যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলোর তিন-চতুর্থাংশ তা অনুমোদন করবে। মি ট্রাম্প এখন সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাই বলা যেতে পারে, এরকম কিছু ঘটার সম্ভাবনা কম। প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব পালনে অক্ষম হলে কি হবে? প্রেসিডেন্ট যদি এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন যে তিনি তার দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না - তাহলে মার্কিন সংবিধান ২৫তম সংশোধনী অনুযায়ী ভাইস প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারেন তিনি। প্রেসিডেন্ট সুস্থ হলে তিনি আবার তার পদে ফেরত আসবেন। প্রেসিডেন্ট যদি ক্ষমতা হস্তান্তর করার মতো সুস্থও না হন - তাহলে তার মন্ত্রিসভা এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট তাঁকে দায়িত্ব পালনে অসমর্থ ঘোষণা করতে পারে, এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট তখন প্রেসিডেন্টের ভূমিকা নিতে পারেন। এর পর যদি ভাইস প্রেসিডেন্টও দায়িত্ব পালনে অক্ষম হয়ে পড়েন, তাহলে প্রেসিডেনশিয়াল সাকসেশন এ্যাক্ট নামে আইন অনুযায়ী প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার এ দায়িত্ব নেবেন। অবশ্য বর্তমানে স্পিক���র ন্যান্সি পেলোসি যেহেতু একজন ডেমোক্র্যাট তাই সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলেন , এরকম কোন পরিস্থিতি হলে তা আইনী লড়াইয়ের জন্ম দিতে পারে। এর পর স্পিকারও যদি দায়িত্ব না নেন - তাহলে একজন সিনিয়র রিপাবলিকান নেতা - বর্তমান পরিস্থিতিতে ৮৭ বছর বয়স্কত চার্লস ই গ্রাসলি - প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে পারেন। অবশ্য এটাও আইনী লড়াইয়ের জন্ম দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের কোন প্রেসিডেন্ট কি আগে দায়িত্ব পালনে অক্ষম হয়েছিলেন? ১৯৮৫ সালে প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগ্যান ক্যা্ন্সারের অস্ত্রোপচারের জন্য যখন হাসপাতালে ছিলেন তখন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট জর্জ হার্বার্ট বুশ। এর পর ২০০২ এবং ২০০৭ সালে প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশকে কলোনোস্কোপি করার জন্য সংজ্ঞাহীন করা হয়েছিল, তখন প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে ছিলেন তার ভাইস প্রেসিডেন্ট। মি. ট্রাম্প নির্বাচনে দাঁড়াতে না পারলে ব্যালটে কার নাম থাকবে? প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কোন প্রার্থী যদি যে কোন কারণে প্রার্থী থাকতে না পারেন - সেব্যাপারে স্পষ্ট বিধি রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন ঠিকই - কিন্তু তিনি রিপাবলিকান পার্টির নির্বাচনী প্রার্থী বলে বিবেচিত হবেন না। মি. ট্রাম্প গুরুতর অসুস্থ ও অক্ষম হয়ে পড়লে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স তার জায়গা নেবেন পার্টির নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় কমিটি ভোটাভুটির মাধ্যমে একজন নতুন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী নির্বাচন করবেন। হয়তো সেভাবে মাইক পেন্স নতুন প্রার্থী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারেন, তবে তখন একজন নতুন রানিং মেটও বেছে নিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অবশ্য আগে কখনো এ পরিস্থিতি হয় নি। কিন্তু নির্বাচনের অনেক ভোট তো ইতোমধ্যেই দেয়া হয়ে গেছে - তার কী হবে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ নিয়ে অনেক রকম অনিশ্চিত পরিস্থিতি তৈরি হবে। কারণ, লক্ষ লক্ষ ভোট ইতোমধ্যে ডাকযোগে দেয়া হয়ে গেছে। একজন বিশেষজ্ঞ, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক রিক হ্যাসেন বলছেন, সম্ভবত অসমর্থ হয়ে পড়া প্রার্থীর নাম-বিশিষ্ট ব্যালট পেপার দিয়েই ভোট চলতে থাকবে। কিন্তু তার জায়গায় নতুন যে প্রার্থী আসবেন - তাকে রাজ্যগুলোর ইলেকটরাল কলেজের নির্বাচকমন্ডলী ভোট দিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। ব্যালট প���পারে নাম কি পরিবর্তন করা যাবে? মার্কিন আইনের আরেক অধ্যাপক রিচার্ড প্লাইডস বলছেন, "যাই ঘটুক না কেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নাম ব্যালট পেপারে থাকবে এটা প্রায় নিশ্চিত।" তিনি বলছেন, রিপাবলিকান পার্টি হয়তো প্রার্থীর নাম পরিবর্তন করার জন্য আদালতে যেতে পারে কিন্তু বাস্তবে তার জন্য যথেষ্ট সময় থাকবে না। আরও পড়ুন: ট্রাম্প বলছেন তিনি ভালো আছেন, কিন্তু সামনে ‘আসল পরীক্ষা’ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও স্ত্রী মেলানিয়া করোনাভাইরাস: অবশেষে মাস্ক পরলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প করোনাভাইরাস: দেহে জীবাণুনাশক ইঞ্জেকশনের পরামর্শ ট্রাম্পের ডোনাল্ড ট্রাম্প: দায়িত্ব পালনে অক্ষম হলে কী হবে? নির্বাচনে কী ঘটবে? করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেরে উঠতে সময় নেন - তাহলে ৩রা নভেম্বর অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কি হবে? +text: ১৯৮০ সালে তিব্বতের মালভূমিতে বৈশিয়া কার্স্ট গুহাতে পাওয়া যায় ডেনিসোভা প্রজাতির চোয়ালের হাড়। চরম প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার ক্ষমতা একমাত্র বর্তমান মানব প্রজাতি- হোমো স্যাপিয়েন্স-এর সাথেই এটি যুক্ত ছিল। আধুনিক মানুষের প্রাচীন এই পূর্বপুরুষ থেকে একটি জিন বর্তমান প্রজাতিতে এসেছে যার মাধ্যমে আধুনিক মানুষ অনেক উঁচু কোনও স্থানে টিকে থাকার ক্ষমতা পেয়েছে। এ নিয়ে নিবন্ধের বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়েছে বিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী 'নেচার'-এ। ডেনিসোভানরা ছিল মনুষ্য প্রজাতিগুলোর মধ্যে একটি রহস্যময় প্রজাতি, যারা এখনকার আধুনিক মানুষের আগে এশিয়ায় বসবাস করতো। ধারণা করা হয়, হাজার বছর আগে তারা পৃথিবীর অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে পর্যন্ত সাইবেরিয়ার ডেনিসোভা গুহাতে পাওয়া জীবাশ্ম থেকে হাড় ও দাঁতের কিছু নমুনায় এই প্রজাতি সম্পর্কে জানা যায়। আরও পড়তে পারেন: নিজের গর্ভে নাতনির জন্ম দিলেন মার্কিন নারী ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে উড়িষ্যায় আতঙ্ক, সতর্কতা 'আমার স্ত্রীর সাথে যৌনমিলন ছিল একটা যুদ্ধের মতো' বৈশিয়া কার্স্ট গুহা। কিন্তু সেখান থেকে পাওয়া ডিএনএ থেকে জানা যায় যে এরা মানবজাতির একটি স্বতন্ত্র শাখা ছিল। এখন বিজ্ঞানীরা অন্য একটি সাইট থেকে প্রথম ডেনিসোভা জীবাশ্ম চিহ্নিত করলো। ১৯৮০ সালে তিব্বতের মালভূমিতে ৩,২৮০ মিটার উচ্চতায় বৈশিয়া কা���্স্ট গুহাতে পাওয়া যায় নিচের ডেনিসোভা প্রজাতির নিচের চোয়ালের হাড়। কার্বন টেস্টের বদলে ইউরেনিয়াম-সিরিজ ডেটিং করা হয় অস্থিগুলোর বয়স বের করার জন্যে। চোয়ালের হাড়গুলো প্রায় ১,৬০,০০০ বছরের পুরনো বলে জানা যায়। এই গবেষণাপত্রের সহ-লেখক যিনি জার্মানির লিপজিগের বিবর্তনবাদী নৃতাত্ত্বিক গবেষণা সংস্থা ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইন্সটিটিউটে কাজ করেন, জিন জ্যাকস হাবলিন বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এতটা উঁচুতে মানুষের আদি প্রজাতির বসবাসের প্রমাণ পাওয়াতে। তিনি বলেন, "যখন আমরা বর্তমান মানুষের আদি প্রজাতি নিয়েনডারথাল বা ডেনিসোভা নিয়ে গবেষণা করেছি তখন দেখা গেছে যে তাদের চরম পরিবেশে টিকে থাকার ক্ষমতা বেশি ছিলনা।" তিব্বত মালভূমিতে পাওয়া ডেনিসোভান সাইট সম্পর্কে মি. হাবলিন বলেন, "এটি একটি মালভূমি এবং অবশ্যই সেখানে বাস করার মতো প্রচুর সম্পদ ছিল, আর তারা শুধু মাঝে মাঝে আসতো এমনও নয়।" জিয়াংলা রিভার ভ্যালি, যেখানে বৈশিয়া কার্স্ট গুহা অবস্থিত। গবেষকরা এই জীবাশ্মে সংরক্ষিত কোনও ডিএনএ-র খোঁজ পাচ্ছিলেন না। তখন তারা ভিন্ন পদ্ধতিতে প্রোটিন সংগ্রহ করেন। সেই কৌশলকে বলা যেতে পারে প্রাচীন প্রোটিন বিশ্লেষণ। গবেষণা পত্রটির আরেক লেখক ডেনমার্কের ইউনিভার্সিটি অব কোপেনহেগেনের ফ্রিডো ওয়েলকার বলেন, "আমাদের প্রোটিন বিশ্লেষণ থেকে পাওয়া তথ্য বলে যে, নিচের চোয়ালের হাড়টি হোমিনিন গোত্রের কারো যারা ডেনিসোভা গুহা থেকে প্রাপ্ত ডেনিসোভানদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত ছিল।" এই আবিষ্কারটির মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যায় যে, ডেনিসোভা গুহাবাসীদের এমন একটি জিন ছিল যা জাইপোক্সিয়া বা অধিকতর উচ্চতায় অক্সিজেনের অভাবের বিরুদ্ধে কাজ করে। এতদিন এটি ঘিরে একটি রহস্য ছিল কেননা সাইবেরিয়ার গুহাটি সমুদ্র সমতল থেকে মাত্র ৭০০ মিটার উচ্চতায়। এখনকার দিনে শেরপা, তিব্বতি এবং এ অঞ্চলের পার্শ্ববর্তী জনগোষ্ঠীরও একই ধরনের জিনগত বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা কি-না হোমোসাপিয়েন্সরা হাজার হাজার বছর আগে ডেনিসোভানদের সাথে মিশে গিয়ে অর্জন করেছিল। প্রকৃতপক্ষে এই জিনগত বৈচিত্র্যটি ইতিবাচক প্রাকৃতিক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এসেছে। তিব্বতের অত্যন্ত উঁচু স্থানে মানুষের আদিম একটি প্রজাতি 'ডেনিসোভান'দের বসবাসের প্রমাণ মিলেছে। +text: গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবর��� করেছেন ২৬ জন। এই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন আরও ২৬ জন। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হলেন মোট ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৩৩২ জন। আর এই ভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মোট মারা গেলেন ৪,৭৫৯ জন। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। আর বাংলাদেশে সর্বশেষ যে ২৬ জনের মৃত্যু হলো, এর ফলে দেশটি করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যার দিকে দিয়ে চীনকে ছাড়িয়ে গেল। চীন হলো সেই দেশ যেখানে সর্বপ্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছিল ওই দেশের উহান শহরে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, চীনে সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে ৪,৭৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত বাংলাদেশে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৪,৭৩৩ জন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ২,৫১২ জন। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৪৩ হাজার ১৫৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪,২১৬টি নমুনা পরীক্ষা করে নতুন শনাক্তের এই সংখ্যা পাওয়া গেছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে। পরীক্ষার অনুপাতে কোভিড-১৯ রোগী শনাক্তের হার ১২.৭৫ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৭ লাখ ৪২ হাজার ৬৯৬টি। যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ২২ জন এবং নারী ৪ জন। যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড মেডিসিনের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত বিশ্বে ২ কোটি ৯০ লাখ ৮ হাজার ৪৯৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন । আর কোভিড-১৯ রোগে সারাবিশ্বে মৃত্যু হয়েছে ৯ লাখ ২৪ হাজার ১২৭ জনের। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত এবং মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। আক্রান্তের দিক থেকে এরপরে রয়েছে ভারত, যদিও মৃত্যুর দিক থেকে তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্রাজিল। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে ১৫ নম্বরে। করোনাভাইরাস: সুস্থ হয়ে উঠতে কতদিন লাগে? নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে করোনাভাইরাস : কীভাবে বানাবেন আপনার নিজের ফেসমাস্ক আপনার কি দ্বিতীয়বার কোভিড ১৯ সংক্রমণ হতে পারে? টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? 'হার্ড ইমিউনিটি' কী, এর জন্য কতটা মূল্য দিতে হবে? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ১,৮১২ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে। +text: শিশুদের অনলাইনে নিরাপদ রাখার যথেষ্ট ব্যবস্থা বাংলাদেশে নেই। মঙ্গলবার ঢাকায় প্রকাশ করা এক রিপোর্টে ইউনিসেফ বাংলাদেশের শিশুদের অনলাইনের ব্যবহার সম্পর্কে একটি চিত্র তুলে ধরে। ইউনিসেফ বিশ্বজুড়ে ১৬০টি দেশে একটি জরিপ চালিয়েছিল শিশুদের অনলাইন ব্যবহার সম্পর্কে একটা ধারণা পেতে। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশেও ১ হাজার ২৮১ জন স্কুল বয়সী শিশুর ওপর জরিপ চালানো হয়। ইউনিসেফ বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি এডুয়ার্ড বেগবেদারের ভাষায়, "ইন্টারনেট এখন শিশুদের জন্য এক দয়া-মায়াহীন জগতে পরিণত হয়েছে। মঙ্গলবার ঢাকায় নিরাপদ ইন্টারনেট দিবস উপলক্ষে ইউনিসেফের এই রিপোর্ট আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশে ৩২ শতাংশ শিশু অনলাইনে ঝুঁকির মুখে রিপোর্টে বলা হচ্ছে: আরও পড়ুন: কিভাবে শিশুরা জড়িয়ে যাচ্ছে অনলাইন আসক্তিতে? অনলাইন ব্যবহারে শিশুদের ঝুঁকি বাড়ছে: ইউনিসেফ প্রতিদিন অনলাইনে যুক্ত হচ্ছে দেড় লাখেরও বেশি শিশু? বাংলাদেশে শিশুদের অনলাইনে সুরক্ষা দেয়ার মতো কতটা আছে? এ প্রশ্নের উত্তরে ইউনিসেফের কম্যুনিকেশন ম্যানেজার শাকিল ফয়জুল্লাহ বলেন, "বাংলাদেশে অনলাইন সম্পর্কিত যত আইন আছে, যেমন ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন, আইসিটি আইন বা পর্ণোগ্রাফি আইন —এগুলোতে মূলত জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এই আইনগুলোর কোনটিতেই অনলাইনে শিশুকে সুরক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা সম্পর্কে আলাদাভাবে কিছু বলা নেই।" অনলাইনে শিশুদের যাতে নিরাপদ রাখা যায় সেজন্যে যুগোপযোগী আইন এবং নীতিমালা প্রণয়নে ইউনিসেফ বাংলাদেশে সবার সঙ্গে মিলে কাজ করে যাবে বলে জানান তিনি। বাংলাদেশের শিশুরা অনলাইনে উৎপীড়ন, হয়রানি এবং আরও নানা ধরণের বিপদের হুমকির মধ্যে আছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ। +text: আর্মড পুলিশের এক সদস্যের কোলে উদ্ধার করা শিশুটি। কর্মকর্তারা বলছেন, শিশুটির বয়স আনুমানিক আট মাস। শুক্রবার সকাল আটটার পরে সে যখন বিমানবন্দরের ভেতরে একটি চেয়ারে বসে ফিডারে দুধ খাচ্ছিল তখন পুলিশর নজরে আসে। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও শিশুটির কোন অভিভাবককে পায়নি পুলিশ বিমানবন্দরে দায়িত্বরত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন। আর্মড প��লিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, রাত দুইটার দিকে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে এক নারী যাত্রী আসেন এবং এরপর তিনি ৫নং বেল্ট থেকে মালামাল সংগ্রহ করেন। মি. হোসেন জানান, সেই নারীর সাথে এই শিশুটি ছিল। শিশুটিকে নিয়ে সে নারী সকাল পর্যন্ত অ্যারাইভাল বেল্টের পাশেই শিশুটিকে নিয়ে বসে ছিলেন। "সকাল পর্যন্ত সে নারী বিমানবন্দরেই ছিলেন। আটাটার দিকে শিশুটিকে ফেলে তিনি চলে যান। এরপর আমরা শিশুটিকে উদ্ধার করি," বলেন মি. হোসেন। আরো পড়তে পারেন: মো. আলমগীর হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন। যে নারী এই শিশুটিকে ফেলে চলে গেছেন তিনি সৌদি আরবে কর্মরত অবস্থায় একটি বিয়ে করেছিলেন বলে দাবি করেন আরেকজন যাত্রীর কাছে। ঐ যাত্রীর নাম আসমা। পুলিশ তার সাথে কথা বলেছে। পুলিশ ধারণা করছে, হয়তো লোকলজ্জার ভয়ে শিশুটিকে সাথে না নিয়ে এয়ারপোর্টে রেখেই চলে যান সে নারী। আসমা পুলিশকে বলেছে, "আমি চারটার দিকে নামছি। তখন থেকে ঐ বাচ্চাকে ওখানে ঘুমিয়ে আছে। আর ওর মা ওখানে দাঁড়ায়ে আছে।" "বলছে ও সৌদি আরবে ছিল। বলছে, আপা সৌদি আরবে আমি বিয়ে করছি। আমি বলছি আপনার এটা করা উচিত হয়নি। বলতে-বলতে কেঁদে দিছে।" যে নারী এই শিশুটিকে বিমানবন্দরে রেখে চলে গেছেন তাকে এরই মধ্যে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। শিশুটি এখন পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রয়েছে। আরো দেখুন: আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আলমগীর জানিয়েছেন, এখন শিশুটিকে দত্তক দেবার ব্যবস্থা করা হবে। "দত্তক নেবার জন্য এরই মধ্যে অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যাচাই-বাছাই করে ভালো একটি জায়গায় দত্তক দেবার কথা আমরা চিন্তা করছি, " বলছিলেন মি. আলমগীর। তিনি বলেন, "সে নারী বাধ্য হয়তো দেশ ফিরে তার এই সন্তানের কথা প্রকাশ করতে চাননি। তিনি বাধ্য হয়েই এ সন্তানকে ফেলে গেছেন। এখন জোর করে শিশুটিকে আবারো তার কাছে দিলে ভালো হবে না।" পুলিশ জানিয়েছে, ইতোমধ্যে সে নারীর নাম, ঠিকানা এবং অবস্থান জানা গেছে। কিন্তু সেটি প্রকাশ করা হবেনা। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক শিশুকে অভিভাবক বিহীন অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। +text: সিলেটের আহাদ টাওয়ার নামে ভবনটি হেলে পড়েছে। শনিবার সকাল থেকে সিলেটে অন্ততঃ পাঁচবার মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এই ভূমিকম্পের উৎস ছিল সিলেটেরই একটি এলাকা জৈন্তা। বাংলাদেশের একটি অঞ্চল থেকে ভূমিকম্প উৎপত্তি হবার নজিরবিহীন খবর বাংলাদেশের বহু মানুষকে উৎসুক করে তোলে। সিলেটে এ নিয়ে এক ধরণের আতঙ্কের পরিবেশও তৈরি হয়। এরই মধ্যে দ্বিতীয় দিনের মতো রবিবার সকালেও এক দফা ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে সিলেটে। ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ভোর ৪টা ৩৫ মিনিটে সিলেট অঞ্চলে হওয়া এই ভূমিকম্পটিও ছিল মৃদু। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ২.৮। রবিবার ঢাকার গণমাধ্যমগুলোতে খবর দিচ্ছিল ছোট ছোট এসব ধারাবাহিক ভূমিকম্পের কারণে ভবন হেলে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। আরো পড়ুন: সিলেটের হেলা পড়া ভবন। তবে পনিটুলা এলাকায় আহাদ টাওয়ার নামে ছয় তলা এই ভবনটির এদিকে ভবনটির মালিকের একজন ঘনিষ্ট আত্মীয় বিবিসিকে বলেছেন, ভবনটি আগে থেকেই কিছুটা হেলে পড়া ছিল। আশিকুর রহমান নামে এই ব্যক্তি ভবন মালিকের জামাতা। তিনি বলেন, "শনিবার ভূমিকম্প হওয়ার পর স্থানীয় এক বাসিন্দা ভবনটির একটি ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দেয়। এর পর স্থানীয় একটি সংবাদ মাধ্যম সেটি নিয়ে খবর প্রকাশ করার পর তা আলোচনায় আসে"। "সবার মধ্যে ধারণা তৈরি হয় যে, ভূমিকম্পের কারণে ভবনটি হেলে পড়েছে"। এ নিয়ে আলোচনা তৈরি হলে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের একটি প্রতিনিধিদল গিয়ে ভবনটি পরিদর্শন করে। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলি নূর আজিজুর রহমান বিবিসিকে বলেন, তাদের একটি তদন্ত দল মেপে দেখেছে যে ভবনটি ইঞ্চিখানেক হেলে রয়েছে। তবে এটি শনিবারই হেলে পড়েছে নাকি আগে থেকেই হেলানো ছিল সেটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে মি. রহমান বলছেন, ভূমিকম্পের কারণে ভবনটি হেলে পড়ে থাকলে ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়ার কথা। কিন্তু সেরকম কোন ফাটল তারা দেখতে পাননি আপাতত তারা ধারণা করছেন যে, ভবনটি নির্মাণ করার সময় হয়তো রাজমিস্ত্রিদের ত্রুটির কারণে সামান্য হেলে গিয়ে থাকতে পারে। তবে নির্মাণের সময় ভবন এমন হেলে পড়লে সেটি গ্রহণযোগ্য এবং এতে কোন ঝুঁকি নেই বলেও উল্লেখ করেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলি। তবে পুরো বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য তারা আরো তদন্ত চালাবেন বলে জানান। ভূমিকম্পের সময় নিজেকে রক্ষা করতে কী করবেন নজিরবিহীন ভূমিকম্প শনিবার সারাদিন অন্তত পাঁচবার ভূমিকম্প অনুভূত হয় সিলেটে। দফায় দফায় এমন কম্পনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয়দের মধ্যে। আবহাওয়া���িদ ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন সাধারণত বড় কোন ভূমিকম্পের আগে বা পরে এমন দফায় দফায় মৃদু কম্পন হতে পারে। ঢাকা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মুমিনুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলছেন, সিলেটে এমন আর কখনো হয়নি, যদিও সিলেট অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরেই ভূমিকম্পের ঝুঁকির মধ্যে। বিশেষ করে তিনটি প্লেটের সংযোগস্থলে বাংলাদেশে। সিলেটের জৈন্তায় শনিবারের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। তবে সবগুলোই ছোটো ধরণের ভূমিকম্প। "কিন্তু ভূমিকম্পের প্রিশক ও আফটারশক থাকে। অনেক সময় বড় ভূমিকম্পের আগে ছোট কম্পন হয়। আবার বড় ভূমিকম্প হলে তারপর ছোট ছোট কম্পন হয়। যেহেতু সিলেট অঞ্চল ভূমিকম্প প্রবণ সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে। তাছাড়া ওই অঞ্চলে বড় ভূমিকম্পের ইতিহাস আছে"। বলেন মি. ইসলাম। যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ গবেষণার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা হয়েছে আর্থ অবজারভেটরি। আর্থ অবজারভেটরির পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলছেন, "সিলেটের জৈন্তা এলাকার ডাউকি ফল্টেই সকালের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল হিসেবে আমাদের কেন্দ্রে আমরা চিহ্নিত করেছি। ডাউকি ফল্ট পূর্ব পশ্চিমে প্রায় তিনশ কিলোমিটার বিস্তৃত এবং এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরেই পলিমাটি দিয়ে ঢাকা।" ভূমিকম্পের প্রবণতা নিয়ে ২০০৩ সাল থেকে গবেষণা করছেন অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার। তার গবেষণা মডেল বলছে ইন্ডিয়ান, ইউরেশিয়ান এবং বার্মা তিনটি গতিশীল প্লেটের সংযোগস্থলে বাংলাদেশের অবস্থান। তিনি জানান, বাংলাদেশের দুই দিকের ভূ-গঠনে শক্তিশালী ভূমিকম্পের শক্তি জমা হয়েছে। তবে আজকের প্রথম ভূমিকম্পটি ভালোভাবে বোঝা গেলেও পরেরগুলো ছিলো আরও মৃদু কম্পন অর্থাৎ খুবই হালকা ধরণের। "কিন্তু মনে রাখতে হবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দুটি অঞ্চলে যেভাবে শক্তি সঞ্চিত হয়ে আছে বহুকাল ধরে তাতে আট মাত্রার পর্যন্ত ভূমিকম্প হতে পারে যদি একবারে হয়। হলে একবারেও হতে পারে আবার ভেঙ্গে ভেঙ্গে বা দফায় দফায়ও হতে পারে। কিন্তু কোন মাত্রার হবে এটা আগে থেকে অনুধাবন সম্ভব না"। মিস্টার আখতার বলেন, "বারবার যেভাবে মৃদু কম্পন অনুভূত হয়েছে তাতে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বড় ধরণের কম্পনও অনুভূত হতে পারে। আবার নাও হতে পারে"। সিলেটে শনিবার দফায় দফায় ভূমিকম্প হওয়ার পর একটি হেলে পড���া ভবন নিয়ে অনেকে আলোচনা শুরু করেছেন। বলা হচ্ছে, ভূমিকম্পের কারণেই ভবনটি হেলে পড়েছে। তবে এই দাবির স্বপক্ষে জোরালো কোন তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না। +text: প্রিন্স হ্যারি এবং মেগান মার্কেল: রাজপরিবারের ভূমিকা থেকে সরে যেতে চান যেরকম আচমকা এই ঘোষণা এসেছে প্রিন্স হ্যারি এবং মেগান মার্কেলের কাছ থেকে, তা রীতিমত হতবাক করে দিয়েছে সবাইকে। এ নিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যমে এখন চলছে তীব্র শোরগোল। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ এই সংকট নিয়ে কথা বলার জন্য আগামীকাল সোমবার তার সান্ড্রিংহ্যাম রাজপ্রাসাদে রাজপরিবারের সিনিয়র সদস্যদের ডেকেছেন। প্রিন্স হ্যারির এই সিদ্ধান্তকে অনেকে তুলনা করছেন অষ্টম এডওয়ার্ডের রাজসিংহাসন ত্যাগের সঙ্গে। ব্রিটিশ রাজসিংহাসনের ক্রমতালিকায় অবশ্য প্রিন্স হ্যারির অবস্থান অনেক পেছনে, আট নম্বরে। রাজপরিবারের সূত্রগুলো জানাচ্ছে, প্রিন্স হ্যারি, প্রিন্স উইলিয়াম এবং তাদের বাবা প্রিন্স চার্লস আগামীকাল রানি এলিজাবেথের সঙ্গে আলোচনায় যোগ দেবেন। প্রিন্স হ্যারি এবং মেগান মার্কেলকে নিয়ে কি ব্রিটিশ রাজপরিবারে সংকট তৈরি হয়েছে প্রিন্স হ্যারির স্ত্রী মেগান মার্কেল ইতোমধ্যে কানাডায় চলে গেছেন। সেখান থেকে তিনিও টেলিফোনে এই আলোচনায় যোগ দিতে পারেন। বিবিসির রাজপরিবার বিষয়ক সংবাদদাতা জনি ডায়মন্ড জানান, আগামী কালের এই বৈঠকেই যে চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে তা নয়। তবে এই দম্পতির সঙ্গে রাজপরিবারের সম্পর্ক এখন কী দাঁড়াবে, সেটা নিয়েই মূলত কথা হবে এখানে। অনেক কঠিন কঠিন বিষয়ের সুরাহা করতে হবে এই বৈঠকে। প্রিন্স হ্যারি এবং মেগান দম্পতি কেন রাজপরিবার ছাড়তে চান গত ৮ই ডিসেম্বর হ্যারি এবং মেগান ঘোষণা করেন যে তারা রাজপরিবারের সামনের কাতারের দায়িত্ব থেকে অবসর নিতে চান। একই সঙ্গে তারা যুক্তরাজ্য এবং উত্তর আমেরিকায় তাদের সময় ভাগাভাগি করে থাকতে চান। একই সঙ্গে তারা আর্থিকভাবেও স্বাধীন হতে চান, যাতে রাজকোষের অর্থের ওপর তাদের নির্ভর করতে না হয়। তারা এই ঘোষণা দিয়েছিলেন রানি বা রাজপরিবারের কোন সদস্যের সঙ্গে আগাম আলোচনা ছাড়াই। এজন্যেই এ ঘটনা এত তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করে। প্রিন্স হ্যারি এবং প্রিন্স উইলিয়াম: দুই ভাইয়ের সম্পর্কে কি ফাটল দেখা দিয়েছে এই ঘটনায় বাকিংহ্যাম প্রাসাদের কর্মকর্তারা হতবাক হয়ে যান। ���াজপরিবারের সিনিয়র সদস্যরা নাকি এই ঘোষণায় একটা বড় ধাক্কা খেয়েছেন। প্রিন্স হ্যারি এবং মেগান মার্কেল বিয়ের পর থেকেই সার্বক্ষণিকভাবে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডে প্রেসের টার্গেটে পরিণত হন। এ নিয়ে তারা তাদের হতাশা এবং দুঃখের কথা জানিয়েছিলেন গত বছরের অক্টোবরে। প্রিন্স হ্যারি এবং মেগান বলেছিলেন, অনেক চিন্তাভাবনা করেই তারা রাজপরিবারের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রাজপরিবারে ফাটল প্রিন্স হ্যারি এবং মেগান মার্কেলের সঙ্গে যে ব্রিটিশ রাজপরিবারের অন্য সদস্যদের সম্পর্ক খুব সুমধুর নয়, এরকম খবর নিয়মিতই প্রকাশ করা হচ্ছিল ব্রিটিশ গণমাধ্যমে। বিশেষ করে বড় ভাই প্রিন্স উইলিয়াম এবং তার স্ত্রী কেটের সঙ্গে তাদের সম্পর্কে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে খবর দিচ্ছিল ব্রিটিশ প্রেস। প্রিন্স হ্যারি এবং মেগানের সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যমে চলছে তীব্র বিতর্ক এর পাশাপাশি রাজপরিবারের সিনিয়র সদস্য হিসেবে তাদের যেসব ভূমিকা পালন করার কথা, সেটাও তারা খুব বেশি উপভোগ করছিলেন না বলেই মনে হচ্ছিল। বিবিসির রাজপরিবার বিষয়ক সংবাদদাতা জনি ডায়মন্ড বলছেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে তারা দুজনেই বেশ সহজভাবেই মিশতে পারেন, কিন্তু সাংবাদিকদের ক্যামেরা প্রিন্স হ্যারি মোটেই পছন্দ করতেন না। এর পাশাপাশি রাজপরিবারের আনুষ্ঠানিকতা তার কাছে খুব একঘেঁয়ে লাগতো। মেগানও চাননি রাজপরিবারের এরকম আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে নিজের কন্ঠস্বর হারাতে। অন্যদিকে যখন তিনি কোন বিষয়ে তার মত সোজা প্রকাশ করেছেন, সেটার জন্য তাকে বিরূপ সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে। এসবকিছুই হয়তো তাদের এই সিদ্ধান্তের পেছনে ভূমিকা রেখেছে। নতুন ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন: সান্ড্রিংহ্যাম প্রাসাদে জরুরী বৈঠক ডেকেছেন রাণী তবে প্রিন্স হ্যারি এবং মেগান রাজপরিবারের বাইরে নিজেদের জন্য যে নতুন জীবন গড়তে চাইছেন, তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন। তাদের নতুন ভূমিকা কী হবে? তারা কোথায় থাকবেন? কে এর খরচ বহন করবে? প্রিন্স হ্যারি এবং মেগান তাদের বিবৃতিতে বলেছিলেন, তারা আর্থিকভাবে স্বাধীন হতে চান। কিন্তু কিভাবে সেটি সম্ভব? আর তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারেই বা কী হবে? কে তাদের নিরাপত্তা দেবে? সেটির খরচ কে জোগাবে? বিশ্লেষকরা বলছেন, সান্ড্রিংহাম রাজপ্রাসাদে সোমবারের বৈঠকে হয়তো এরকম অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁ��ে পেতে হবে। প্রিন্স হ্যারি এবং তার স্ত্রী মেগান মার্কেল রাজপরিবারের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়ে কানাডায় চলে যাওয়ার ঘোষণা দেয়ার পর ব্রিটিশ রাজপরিবার এক অভূতপূর্ব সংকটে পড়েছে। +text: রোবট রাজহাঁস: দেখলে মনেই হবে না এটি যান্ত্রিক। চ্যানেল নিউজ এশিয়ার খবর অনুযায়ী, এধরনের পাঁচটি যান্ত্রিক হাঁস ইতোমধ্যেই পানিতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে। এদের কাজ হবে সিঙ্গাপুর শহরে জল সরবরাহের প্রধান হ্রদে ভেসে বেড়ানো এবং জলের মানের দিকে নজর রাখা। চ্যানেল নিউজ বলছে, এই রোবট হাঁসগুলো নির্মাণ করা হয়েছে এমনভাবে যেন হ্রদের অন্যান্য রাজহাঁসের মধ্যে এগুলো মিশে যেতে পারে। আরো পড়তে পারেন: প্রতিদিন ৩০০জন রোহিঙ্গাকে ফেরত নেবে মিয়ানমার যৌন হেনস্থা নিয়ে মুখ খুললেন অলিম্পিয়ান সিমোন বেলিস হাঁসের ঝাঁকের সাথে মিশে এই রোবটগুলো ঘুরে বেড়াবে। কিন্তু রোবটের তালায় থাকবে প্রপেলার এবং পানি পরীক্ষার যন্ত্র। জল পরীক্ষার পর ওয়্যারলেস প্রযুক্তির মাধ্যমে তৎক্ষণাৎ পরীক্ষার ফলাফল পৌঁছে দেয়া হবে কর্তৃপক্ষের কাছে। এই 'সোয়ানবট'গুলো তৈরি করেছে যে বিজ্ঞানীরা তাদের একজন হলেন সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ম্যানডার চিট্রে। জলের তালায় এই রোবট রাজহাঁসের অনেক কাজ। তিনি জানাচ্ছেন, প্রথমে তারা ছোট পাখির মডেল বেছে নিয়েছিলেন। কিন্তু আকৃতিতে বড় বলে তারা রাজহাঁসের রোবট বানানোর সিদ্ধান্ত নেন। এই রোবটগুলো এমনভাবে বানানো হয়েছে যাতে ছোট নৌকা, ডিঙ্গি বা কায়াকের আঘাত লাগলেও এদের কোন ক্ষতি হবে না। কিন্তু এর সবচেয়ে বড় সুবিধে হবে, জল পরীক্ষার জন্য এখন থেকে বিজ্ঞানীদের আর জলাধারে যেতে হবে না। বিবিসি বাংলার আরো খবর: রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানো নিয়ে উদ্বিগ্ন ব্রিটিশ এমপিরা মেয়েদের কটাক্ষ ও গোপন ভিডিওর হুমকিতে ক্ষোভ সিরিয়ায় আমেরিকা গড়ে তুলছে 'বিএসএফ' বাহিনী রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানো নিয়ে উদ্বিগ্ন ব্রিটিশ এমপিরা সিঙ্গাপুরের কর্তৃপক্ষ সে দেশের প্রধান জলাধারে পানির মান পরীক্ষার জন্য কতগুলো রোবট রাজহাঁস ছেড়েছে। +text: সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ বিবিসি বাংলার রায়হান মাসুদ জানিয়েছেন, বোর্ডের একজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন সাকিবকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয়েছে। কর্মকর্তা বলেন, উত্তর পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বিসিবির প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান সাংবাদিকদের বলেছেন, সাকিবের ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবেনা। এর আগে, বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, "টেলিকম কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে হলে, তা আমাদের জানাতে হয়। চুক্তি করার আগে সাকিব আমাদের অফিসিয়ালি জানিয়েছেন বলে আমাদের রেকর্ডে নাই৷ এটা আমরা দেখছি। সভাপতিও এটা নিয়ে কথা বলেছেন। আমরাও দেখছি।'' তবে, সাকিবের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড যে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছে, সেই ব্যবস্থা কি হতে পারে - তা খোলাসা করে বলেননি মি. চৌধুরী। সাকিবের ব্যাপারে ছাড় দেওয়া হবেনা: বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান বেতন-ভাতা সহ বিভিন্ন দাবিতে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সাথে বিসিবির নজিরবিহীন বিরোধের প্রেক্ষাপটে সাকিবের বিরুদ্ধে এই হুমকি এলো। বিদ্রোহ থামাতে বিসিবি ক্রিকেটারদের সিংহভাগ মেনে নিলেও খেলোয়াড়দের সাথে বোর্ড প্রশাসনের সম্পর্কের তিক্ততা নিয়ে ক্রিকেট ভক্তদের মনে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ক্রিকেটারদের ধর্মঘট প্রত্যাহার, বোর্ডের সাথে রফা বোর্ডের আয়ের ভাগ চান ক্রিকেটাররা সংবাদ সম্মেলনে ক্রিকেটারদের দাবি পেশ করছেন সাকিব আল হাসান (ফাইল চিত্র) জানা গেছে, তিন দিন আগে দেশের শীর্ষস্থানীয় টেলিকম কোম্পানি গ্রামীণফোনের সঙ্গে একটি স্পন্সরশিপ চুক্তি করেন সাকিব আল হাসান। বিসিবির সঙ্গে ক্রিকেটারদের যে চুক্তি রয়েছে, তাতে জাতীয় দলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকা অবস্থায় কোনো খেলোয়াড় টেলিকম কোম্পানির সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কোনো চুক্তি করতে পারবেন না। বোর্ডকে না জানিয়ে গ্রামীণ ফোনের সাথে চুক্তি করার অভিযোগ নিয়ে সাকিব আল হাসানের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বলছে, তাদের অজ্ঞাতে গ্রামীণ ফোনের সাথে স্পন্সরশিপ চুক্তি করে সাকিব আল হাসান বিসিবির সাথে তার চুক্তির বরখেলাপ করেছেন। +text: গোঁফ দেখিয়ে দলিতদের প্রতিবাদ। গত কয়েকদিনে গোঁফ রাখার অজুহাতে উচ্চবর্ণের লোকজন অন্তত চারজন দলিতের ওপরে হামলা চালিয়েছে। দলিত শ্রেণীর এক যুবক গরবা নাচ দেখতে গিয়ে খুন হন গত সপ্তাহে। একের পর এক হামলার দায় নিয়ে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে মিছিল করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন বেশ কিছু দলিত যুবক। তারা বলছ��ন, দলিতদের ওপরে আক্রমণের কোনও সাজা হয় না বিজেপি-শাসিত গুজরাতে, অথচ সেই রাজ্যেরই সবথেকে পরিচিত ব্যক্তিত্ব মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী এই দলিতদেরই আপন করে নিয়ে হরিজন নাম দিয়েছিলেন। সতের-বছর বয়সী দলিত ছাত্র দিগন্ত মাহেরিয়া যখন মঙ্গলবার স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিল, তখন দুই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি মোটরসাইকেলে চেপে এসে তার পিঠে ব্লেড চালিয়ে দেয়। তার এক দাদা পিযুষ পারমার গত সপ্তাহে মার খেয়েছে গ্রামেই। এদের অপরাধ, দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ হয়েও এরা গোঁফ রেখেছিল। সন্দেহ করা হচ্ছে আক্রমণকারীরা রাজপুত সম্প্রদায়ের, যারা মনে করে যে দলিত শ্রেণীর মানুষের গোঁফ রাখার অধিকার নেই। তারপরেই গুজরাতের দলিতরা সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের ছবি বদলে দিতে শুরু করেছেন - নিজের ডিসপ্লে পিকচারে গোঁফ সহকারে ছবি দিচ্ছেন তারা। পুলিশের বাধার মুখে দলিত আন্দোলনকারী দলিতদের অধিকারের জন্য আন্দোলন করেন জিগনেশ মেওয়ানী। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, গতবছর উনাতে চারজন দলিতকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছিল - যা নিয়ে সারা দেশে ব্যাপক প্রতিবাদ হয়েছিল। "কিন্তু গুজরাতে দলিতদের ওপরে তার থেকে বহু গুন বেশী অত্যাচার প্রতিদিন ঘটছে। আর এই এত বছর ধরে সেইসব অত্যাচারের কোনও বিচার হয় নি। রাজ্যে দলিতদের ওপরে অত্যাচারের ১০০টা ঘটনা হলে, ৯৭ জন অভিযুক্তই ছাড়া পেয়ে যান," তিনি বলেন, "সব ঘটনাতেই উচ্চবর্ণের লোকেরা জড়িত, তাই বিজেপি শাসিত সরকার বলতে গেলে কিছুই করে না। এতদিন ধরে জমে থাকা ক্ষোভ এবারে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে।" তিনি যখন বিবিসি-র সঙ্গে কথা বলছিলেন, তার কয়েক মিনিট আগেই হাজত থেকে বেরিয়েছেন তিনি। দলিতদের ওপরে ক্রমাগত আক্রমণের প্রতিবাদে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে একটি মিছিল থেকে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন মি. মেওয়ানীসহ আরও অনেকে। অধিকারের প্রশ্নে দলিত আন্দোলন। তার কথায়, শুধুমাত্র গোঁফ রাখার কারণে উচ্চবর্ণের লোকরা দলিতদের মারছে। নবরাত্রির উৎসবে গরবা নাচ দেখতে গিয়েছিল বলে এক দলিত যুবককে দেওয়ালে মাথা ঠুকে দিয়ে মেরে ফেলা হল - এ সবই হচ্ছে সত্যিকারের গুজরাত মডেল - যে মডেলের কথা নরেন্দ্র মোদী সারা দেশে বলে বেড়াচ্ছেন। মি. মোদী গান্ধীজীর কথা বলেন, যে গান্ধীজী দলিতদেরকেই হরিজন বলে আপন করে নিয়েছিলেন, তাদেরই আজ এই অত্যাচার সহ্য করতে হচ্ছে গুজরাতে গ্���ামে গ্রামে, বলছিলেন জিগনেশ মেওয়ানী। সদ্য চালু হওয়া বিবিসি-র গুজরাতি বিভাগের সাংবাদিক দীপক চুডাসামার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, দলিতদের এই ক্ষোভ কি বিজেপি বিরোধী বিক্ষোভে পরিণত হওয়ার কোনও সম্ভাবনা আছে ডিসেম্বরে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে? তার জবাব ছিল, বিজেপি উচ্চবর্ণের দল হিসাবেই প্রতিষ্ঠিত। আর কেন্দ্র এবং রাজ্য - দুই জায়গাতেই তাদেরই সরকার, অথচ দলিতদের ওপরে একের পর এক অত্যাচারের ঘটনা সামনে আসছে, অথচ সরকারকে কোনও বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। "তাই বিজেপি-বিরোধী বিক্ষোভ তো বাড়ছেই। তবে শুধু মাত্র দলিতরা বিজেপিকে খুব একটা বেগ দিতে পারবে বলে মনে হয় না। কিন্তু পাটিদার সম্প্রদায়ও আগেই বিজেপি-র সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন শুরু করেছে। অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর মানুষেরও ক্ষোভ রয়েছে, বলছিলেন মি. চুডাসামা, "তাদের সঙ্গেই যদি এই দলিতদেরও বিক্ষোভ শুরু হয়, তাহলে সেটা তো বিজেপিকে নির্বাচনে কিছুটা হলেও বেগ দেবে।" লক্ষণীয় বিষয় হল, যে সামাজিক মাধ্যমকে নিজেদের প্রচারের সবথেকে বড় হাতিয়ার করে বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, এই দলিত যুবকরাও কিন্তু সেই মাধ্যমকেই বেছে নিয়েছেন নিজেদের প্রতিবাদ জানানোর জন্য। বিশ্লেষকরা বলছেন এখনই হয়তো দলিত শ্রেণীর সব মানুষ এক জায়গায় আসতে পারছেন না কিন্তু হোয়াটসঅ্যাপে গোঁফসহ নিজের ছবি লাগিয়ে প্রতিবাদটা তারা ছড়িয়ে দিতে পারছেন অনেক সহজেই। ভারতের গুজরাত রাজ্যের দলিতরা নিজেদের গোঁফসহ ছবি দিয়ে সামাজিক মাধ্যমের প্রোফাইল বানিয়ে এক অভিনব প্রতিবাদ শুরু করেছে। +text: ভারতের নতুন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ বিরোধী কংগ্রেসের অভিযোগ, বর্তমান সরকার শুধু নেহরুর আদর্শ ও দর্শন থেকে সরেই আসছে না - আধুনিক ভারতের এই রূপকারকে পদে পদে অপমানও করছে। জবাবে বিজেপি বলছে, নেহরু ছাড়াও ভারতে আরো অনেক রাজনৈতিক চিন্তাবিদ ছিলেন যাদের ভাবনা এতদিন গুরুত্ব পায়নি - তারা শুধু সেই ত্রুটিটাই শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করছে। নেহরুর পররাষ্ট্রনীতিও আজকের দুনিয়ায় প্রাসঙ্গিক নয় বলেই দাবি করছেন তারা। কিন্তু নেহরুকে ঘিরে আচমকা ভারতে কেন এই বিতর্ক? রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ গতকাল পার্লামেন্টের সেন্ট্রাল হলে যে ভাষণ দেন তাতে নেহরুর মন্ত্রিসভার দুই সদস্য, সর্দার প্যাটেল ও বি আর আম্বেদকরকে শ্র���্ধা জানালেও তিনি একবারও নেহরুর নামই করেননি। ভাষণে জাতির জনক গান্ধীজির সঙ্গেই এক নি:শ্বাসে তিনি উচ্চারণ করেছেন বিজেপির তাত্ত্বিক গুরু দীনদয়াল উপাধ্যায়ের নাম। রাজ্যসভায় আজ এরই প্রতিবাদে ফেটে পড়ে কংগ্রেস। দলের নেতা আনন্দ শর্মা বলেন, "যেভাবে মহাত্মা গান্ধীকে ছোট করা হচ্ছে, নেহরুর অবদানকে মুছে দেওয়া হচ্ছে কিংবা তাদের সঙ্গে তুলনা টানা হচ্ছে দীনদয়াল উপাধ্যায়ের - সেটা কিছুতেই মানা সম্ভব নয়। এই সরকার দীনদয়ালের শতবর্ষ পালন করলেও ইন্দিরা গান্ধীর শতবর্ষ পালনে তাদের কোনও আগ্রহই নেই।" জবাবে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি পাল্টা অভিযোগ করেন, টিভি ক্যামেরার নজর পেতেই কংগ্রেস এই জাতীয় চটকদার কথাবার্তা বলছে। তুমুল তর্কাতর্কির পর সেই বিতন্ডা তখনকার মতো থামলেও ভারতের বর্তমান সরকার যে জহরলাল নেহরুর আদর্শ থেকে পুরোপুরি বিচ্যুত, কংগ্রেস সেই অভিযোগ থেকে কিন্তু সরে আসছে না। দলের বর্ষীয়ান এমপি প্রদীপ ভট্টাচার্য বিবিসিকে বলছিলেন, নেহরুভিয়ান দর্শনের দুটো মূল স্তম্ভ - ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদই আজকের ভারতে সবচেয়ে বিপন্ন। "এক বিখ্যাত লেখকের প্রশ্নের জবাবে নেহরুজি একবার বলেছিলেন স্বাধীন ভারতে তার সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ হল দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রাখা আর বহু ধর্ম-বহু সংস্কৃতির মিলনে যে সংমিশ্রণ তৈরি হয়েছে সেটাকে রক্ষা করা।" "কিন্তু বর্তমান সরকার আসার পর ভারতের সেই বহুত্ববাদকে তারা কোনও মর্যাদাই দিচ্ছে না। চীনের সাংস্কৃতিক বিপ্লবে যেমন সমাজের সব কিছু ভেঙেচুরে নতুন করে তৈরি করার চেষ্টা হয়েছিল ভারতেও এখন যেন সেই ধরনেরই চেষ্টা চলছে", বলছিলেন প্রদীপ ভট্টাচার্য। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: 'পানির নীচে রাস্তা ভালো', ট্রাফিকের সাইনবোর্ড স্বামীগৃহ হারাচ্ছেন মিয়ানমারের ধর্ষিতা রোহিঙ্গা নারীরা ভারতে স্কুল বই থেকে গুজরাত দাঙ্গা বাদ দেওয়ার সুপারিশ বিরোধী কংগ্রেসের অভিযোগ, বর্তমান সরকার শুধু নেহরুর আদর্শ ও দর্শন থেকে সরেই আসছে না - আধুনিক ভারতের এই রূপকারকে পদে পদে অপমানও করছে। বিজেপি-র পলিসি রিসার্চ গ্রুপের অনির্বাণ গাঙ্গুলি আবার পাল্টা যুক্তি দিচ্ছেন - অন্য রাজনৈতিক চিন্তাবিদরা কংগ্রেস আমলে উপেক্ষিত হয়েছিলেন, এখন সেই ভুলটাই শোধরানোর পালা চলছে। "দেশ গড়ার দর্শন তো নেহরু শুধু একা দেননি - শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি, দীনদয়��ল উপাধ্যায় কিংবা ওদিকে রামমনোহর লোহিয়া-আম্বেদকরের মতো অনেকেই দিয়েছেন। নেহরু নিজেই মারা গেছেন পঞ্চাশ বছরের ওপর। তার চিন্তাধারা তো এমন কোনও স্ট্রেইট জ্যাকেট নয় যে তাতে কাটছাঁট করা যাবে না বা সেটা ফেলে আসা যাবে না!" "মুশকিল হল কংগ্রেস তাদের ষাট বছরের শাসনে নেহরু ছাড়া অন্য কোনও চিন্তাবিদকেই যথাযোগ্য মর্যাদা দেয়নি। আমরা এখন সেটা থেকেই বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছি", বলছিলেন অনির্বাণ গাঙ্গুলি। কংগ্রেস আবার বলছে - নেহরুর বিদেশনীতি থেকে সরে আসার জন্যও আজকের ভারতকে চড়া দাম দিতে হতে পারে। প্রদীপ ভট্টাচার্যর কথায়, "নেহরুর পররাষ্ট্রনীতির মূল কথা ছিল সহাবস্থান ও সহযোগিতা। পৃথিবীর সব দেশ, বিশেষ করে ক্ষমতাধর দেশগুলোর সবার সঙ্গেই তিনি একটা ভারসাম্য রক্ষা করে চলতেন। এখন সেই ব্যালান্সটাই আর নেই! "আমি তো খুবই চিন্তিত ভারত যেভাবে চীনের সঙ্গে প্রায় যুদ্ধে নেমে পড়েছে ... আর সেই সঙ্গে পুরোপুরি ঝুঁকে পড়েছে আমেরিকার দিকে। ভাবখানা এমন যেন আমাদের বিপদে আমেরিকা এসে রক্ষা করবে!" জবাবে বিজেপির সাফ কথা - পন্ডিত নেহরুর পঞ্চশীল বা নির্জোট আন্দোলনের নীতি আজকের ভূরাজনীতিতে প্রাসঙ্গিকই নয়। অনির্বাণ গাঙ্গুলি বলছিলেন, "পঞ্চশীল করে আমরা কী পেয়েছি? বাষট্টিতে চীনের সঙ্গে যুদ্ধ - আর আকসাই চীন তাদের হাতে তুলে দিয়েছি। ফলে নির্জোট আন্দোলনের যুগ, নির্জোট আন্দোলনের ভাবনাটাই এখন চলে গেছে। "ভারত এখন বিশ্বে নানা প্র্যাগম্যাটিক অ্যালায়েন্স গড়তে চাইছে। আমরা একটা সক্ষম, স্বনির্ভর দেশ - আর বিশ্বে আমাদের সেই প্রাপ্য মর্যাদা যাতে পাওয়া যায়, তার ওপর ভিত্তি করেই নরেন্দ্র মোদির বিদেশনীতি গত তিন বছরে এগিয়েছে।" ড: গাঙ্গুলির এই কথা থেকেই স্পষ্ট, নেহরুভিয়ান দর্শন থেকে বিজেপি সরকার সম্পূর্ণ উল্টোপথে হাঁটছে - আর তা নিয়ে কোনও লুকোছাপাও রাখা হচ্ছে না। আধুনিক ভারত গঠনে জহরলাল নেহরুর ভূমিকা যাই হোক বা তা নিয়ে যাই বিতর্ক থাক - তারা খুব সচেতনভাবেই সেটাকে পুরোপুরি উপেক্ষা করার নীতি নিয়েছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: ভারতে এবার খোলা জায়গায় মলত্যাগ নিয়ে চলচ্চিত্র পশ্চিমবঙ্গে ধর্মীয় সহিংসতার পেছনে কারণ কী এইচআইভি প্রতিরোধে মহিলাদের জন্যে নতুন রিং জওহরলাল নেহরু ভারতের নতুন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ তার প্রথম ভাষণে কেন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জও��রলাল নেহরুর নাম উল্লেখ করেননি, সেই প্রশ্নে আজ পার্লামেন্টে তুমুল বিতন্ডা হয়েছে। +text: ক্যামেরায় ধরা পড়েন অসি ব্যাটসম্যান ব্যাংক্রফ্ট অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের গণমাধ্যম ধারণা করছে, স্মিথ ও ওয়ার্নার প্রতারণার শাস্তি হিসেবে আজীবন নিষিদ্ধও হতে পারেন। বাংলাদেশের ক্রিকেট মহলেও এই ঘটনাই এখন প্রধান আলোচ্য বিষয়। বাংলাদেশের বোলাররা বল ট্যাম্পারিং নিয়ে কতটা সচেতন? বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিসিবি কতটা সতর্ক? বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক পেস বোলার ও বিসিবির বর্তমান মিডিয়া কমিটির পরিচালক জালাল ইউনুস বিবিসি বাংলাকে বলেন - ক্রিকেটে এটা অনেক দিন ধরেই চলে আসছে এবং বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের এই ব্যাপারটায় সম্পূর্ণ নিরুৎসাহিত করা হয়। "এটা তো নতুন কিছু না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের এটার যে আইন আছে সেটা নিয়ে আমাদের প্রতিটা ক্রিকেটার অবগত আছে। এটা একটা বড় অপরাধ, অনেকটা অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের মত"। মি. ইউনুসের মতে, বল ট্যাম্পারিং নির্ভর করে খেলার গুরুত্বের ওপর। "বড় বড় আন্তর্জাতিক ম্যাচে বল নিয়ে কারসাজি করার চেষ্টা করা হয়। সেক্ষেত্রে জয়-পরাজয়ও নির্ধারণ করে এমন ঘটনা"। তিনি বলেন, "অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা এটা করেছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে এটা কমই দেখা যায়, জয়ের তাড়না থেকেই এটা করে থাকে"। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা যে জয়ের তাড়নায় এ ধরনের কারসাজি করবে না তার গ্যারান্টি কী? এই প্রশ্নের জবাবে জালাল ইউনুস বিবিসি বাংলাকে বলেন, "এদিক থেকে অন্তত আমরা বলতে পারবো আমাদের ক্রিকেটাররা সচেতন। এখন পর্যন্ত এমন কোনো অভিযোগ বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে আসেনি"। তিনি যোগ করেন, "যখনই আন্তর্জাতিক সিরিজ হয়, টিম ম্যানেজমেন্ট এটা নিয়ে আলোচনা করে। এমনকী নির্দিষ্ট কোনো দলের ট্যাম্পারিং করার ইতিহাস থাকলেও আমরা তাদের বিপক্ষে খেলার সময়েও ট্যাম্পারিং নিয়ে আমাদের ছেলেদের নিরুৎসাহিত করে থাকি।' সংবাদ সম্মেলনে বল নিয়ে কারসাজির কথা স্বীকার করেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটাররা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কেপটাউন টেস্টে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের বল ট্যাম্পারিং নিয়ে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা চলছে ক্রিকেট বিশ্বে। +text: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, এ মৌসুমে ডেঙ্গু বাড়বে। সিটি কর্পোরেশনের হিসাবে, সারা দেশে এবছর এ পর্যন্ত ডেঙ��গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দুই হাজারের বেশি। যাদের মধ্যে দুই জন মারা গেছেন। ডেঙ্গু রোগীদের মধ্যে ১,৮৭৫ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩০০ জন। এই প্রেক্ষিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে অ্যাম্বাসেডর নিয়োগ করা হয়েছে। কারা এই অ্যাম্বাসেডর? ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বিবিসি বাংলাকে বলেন, ওয়ার্ড ভিত্তিক অর্থাৎ প্রতিটি ওয়ার্ডে আয়তন এবং জনসংখ্যার অনুপাতে চার-পাঁচটি এলাকায় সাত জন করে ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রধান বা নেতা, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। প্রতিটি ওয়ার্ডের আয়তন ভেদে যে কমিটি তাদেরকে কমিউনিটি অ্যাম্বাসেডর উপাধি দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। অ্যাম্বাসেডরদের সবাই তাদের নিজ এলাকার নাগরিক। আরো পড়তে পারেন: ঢাকায় কি এ মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়বে? মশা আমদানি করে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমানোর উপায় যেভাবে চলবে ঢাকা দক্ষিণের মশা নিধন অভিযান অ্যাম্বাসেডর নিয়োগ দেয়ার কারণ কী? কমিউনিটি অ্যাম্বাসেডরদের কেন নিয়োগ দেয়া হলো এ বিষয়ে মিস্টার খোকন বলেন, তারা প্রায়ই নাগরিকদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে থাকেন যে বিভিন্ন এলাকায় মশার ওষুধ স্প্রে করা হয়নি, মশা নিধন কর্মী যায়নি, বা সাত দিনের ময়লা পরিষ্কার করা হয়নি, সংস্কার কাজে ধীরগতি আছে। "এসব অভিযোগ যাতে সুষ্ঠুভাবে সমাধান করা যায় এবং এসব অভিযোগ যাতে না আসে সেই নজরদারি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতেই তারা এসব কাজ করবে। অর্থাৎ চেকড এন্ড ভ্যালেন্সড নিশ্চিত করতেই এই অ্যাম্বাসেডর নিয়োগ দেয়া হয়েছে।" 'সিটিজেন এংগেজমেন্ট' বা নাগরিক সংশ্লিষ্টতা বাড়ানোও কমিউনিটি অ্যাম্বাসেডর নিয়োগ দেয়ার একটি কারণ। মশা নিধনে কিভাবে ভূমিকা রাখবেন কমিউনিটি অ্যাম্বাসেডরা? দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যেহেতু অ্যাম্বাসেডর তার এলাকার প্রতিনিধিত্ব করেন তাই তাদের কাজ হচ্ছে তার এলাকায় কোথায় কী ধরণের অসুবিধা আছে, কোথায় মশা মারার ওষুধ ছিটাতে হবে বা ওষুধ ঠিকমতো ছিটানো হচ্ছে কি না - তা কাউন্সিলরের সাথে পরামর্শ করে ব্যবস্থা করা। "এছাড়া পরি���্ছন্ন কর্মীরা ঠিকমতো কাজ করছে কিনা তাও তদারকি করবেন তারা।" মিস্টার খোকন বলেন, মশা নিধনসহ নানা কাজে সিটি কর্পোরেশনের যে সব কর্মী নিয়োজিত রয়েছেন, তারা সে কাজ করবেন। কিন্তু অ্যাম্বাসেডরের নিয়োগ হওয়ায় এখন থেকে তারা নাগরিক নজরদারির মধ্যে থাকবেন। তিনি বলেন, যদি কোন সংশ্লিষ্ট এলাকায় নাগরিক ভোগান্তি বা সমস্যা থাকে তা সিটি কর্পোরেশনকে অবহিত করে তা লাঘব করা হবে অ্যাম্বাসেডরদের কাজ। তিনি বলেন, "একটা ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করা হচ্ছে, সেখানে ছবি তুলে পোস্ট দিলে সাথে সাথে আমাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত লোক সেখানে চলে যাবে। এভাবে আমরা নেটওয়ার্ক তৈরি করেছি।" মশা নিধন কাজের উপর তদারকি করবেন কমিউনিটি অ্যাম্বাসেডররা। যে ৩ উপায়ে কাজ করবেন অ্যাম্বাসেডররা মেয়র খোকন জানান, মশা নিধনসহ নিজ নিজ এলাকার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অভিযোগ তুলে ধরার বেশ কয়েকটি সুযোগ রয়েছে অ্যাম্বাসেডরদের। এরমধ্যে একটি হচ্ছে, সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট ফেসবুক পেইজে ছবিসহ অভিযোগ পোস্ট করা। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, ওই এলাকার সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে অবহিত করবেন। আর তৃতীয়টি হলো, কোন অ্যাম্বাসেডর চাইলে সরাসরি মেয়রের কাছে উপস্থিত হয়ে সমস্যার কথা তুলে ধরতে ও তার সমাধানে ব্যবস্থা নিতে পারবেন। তিনি বলেন, "মশা নিধন ছাড়াও একটি এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের অন্য কাজেরও তদারকি করবেন অ্যাম্বাসেডররা।" ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিধনে ভূমিকা রাখতে অ্যাম্বাসেডর নিয়োগ দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। +text: 'ফিরকি' ধারাবাহিকের কয়েকজন অভিনয় শিল্পী তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নিয়ে এর আগে কোনও বাংলা ধারাবাহিক হয়নি। ওই ধারাবাহিকে কাজ করছেন এমন কলাকুশলীরা বলছেন যে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নিয়ে কাহিনী থেকে দর্শক মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন - এই কারণ দেখিয়েই সিরিয়ালটি বন্ধ করে দিচ্ছে জি বাংলা। যদিও চ্যানেল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন যে ধারাবাহিকের কাহিনীটি শেষ হয়ে গেছে বলেই বন্ধ করা হচ্ছে। জি গোষ্ঠীর চ্যানেলগুলির ক্লাস্টার বিজনেস হেড সম্রাট ঘোষ বিবিসিকে জানিয়েছেন, "এ ধরণের একটি ধারাবাহিক আনতে পেরে আমরা গর্বিত ঠিকই, কিন্তু কাহিনীর যাত্রাপথ শেষ হয়ে গেছে। সেজন্যই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।" কিন্তু ফিরকি ধারাবাহিকের কলাকুশলীরা বলছেন যে আসল কারণটা অন্য। তৃতীয় লিঙ্গের মানু��দের দেখলেই নাকি ছোট শহর বা মফস্বলের মানুষ অন্য চ্যানেলে চলে যাচ্ছেন, ফলে টিআরপি কমছে। আর সেজন্যই এই ধারাবাহিক বন্ধ করা হচ্ছে বলে বিবিসিকে জানাচ্ছিলেন এটিতে অভিনয় করা তৃতীয় লিঙ্গের এক অভিনেত্রী সুজি ভৌমিক। তার কথায়, "আমি সরাসরি প্রোডিউসারের কাছ থেকে জেনেছি যে সিরিয়ালে যখনই আমাদের গল্প আসছে, যখন আমাদের তৃতীয় লিঙ্গের চরিত্রগুলো দেখানো হচ্ছে, তখনই নাকি দর্শক অন্য চ্যানেলে চলে যাচ্ছে। এটা চ্যানেল কর্তৃপক্ষ বলছেন। তারা তো ব্যবসা করতে এসেছে, টিআরপি কমলে তারা সিরিয়ালটা আর চালাবে কেন! আমাদের দুর্ভাগ্য যে সিরিয়ালটা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।" প্রযোজনা সংস্থা অ্যাক্রপলিস এন্টারটেইনমেন্টের সানি ঘোষ রায় অবশ্য বলছেন, "সিরিয়ালটার যা টিআরপি আসছিল, হয়তো চ্যানেল আরও বেশী আশা করছিল। প্রত্যেক চ্যানেলের তো নিজস্ব কিছু মানদন্ড আছে কোনটা জনপ্রিয় হচ্ছে, সেটা মাপার। সেই মাপকাঠিতে হয়তো পৌঁছনো যাচ্ছিল না। তবে তৃতীয় লিঙ্গের কিছু চরিত্র আছে, তাই মানুষ চ্যানেল ঘুরিয়ে দিচ্ছে বলেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বলে যা বলা হচ্ছে, তা সঠিক নয়।" তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নিয়ে এরকম ধারাবাহিক বাংলা টিভি চ্যানেলে এর আগে আর হয়নি ধারাবাহিকটির পরিচালক সৌমেন হালদার বলেন, তার কাছেও সঠিক তথ্য নেই যে কেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে 'ফিরকি'। "প্রযোজনা সংস্থা এবং চ্যানেল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মেনে নিতেই হবে, তারাই হয়তো অনেক ভাল বোঝেন ব্যাপারাটা। হয়তো আমরাই ভাল করতে পারছিলাম না। সেজন্যই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।" মি. হালদার আরও বলেন, "আমি কিন্তু অনেক দর্শকের কাছ থেকে নিয়মিত বার্তা পাচ্ছি, তারা জানতে চাইছেন কেন ধারাবাহিকটি বন্ধ হচ্ছে - 'আমরা তো দেখছিলাম সিরিয়ালটা'। ভারতে আইন করে তৃতীয় লিঙ্গ এবং রূপান্তরকামীদের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে, আইনি অধিকার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ যদি তৃতীয় লিঙ্গের কয়েকটি চরিত্র থাকলে সেই ধারাবাহিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেন, তার অর্থ কী এটাই যে আইনি স্বীকৃতি পেলেও তৃতীয় লিঙ্গ এখনও সামাজিক স্বীকৃতি পায়নি? আরও পড়ুন: "নিজের লিঙ্গপরিচয় নির্ধারণের অধিকার আমার নিজের" 'বর্ধমানের ভাষায় মেয়ে ন্যাংড়া ছেলে/ বরিশালে মাইগ্যাপর' ভারতের প্রথম তৃতীয় লিঙ্গ কলেজ প্রিন্সিপালের পদত্যাগ রূপান্তরিত সমাজকর্মী রঞ্জিতা সিনহা বলছিলেন যে তার ব্যাখ্যাটা এক্���েত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন। "আমি গ্রামে গঞ্জে বা মফস্বল শহরে গিয়ে দেখেছি এই সিরিয়ালটাকে মানুষ খুবই পছন্দ করেন। একটা অনুষ্ঠানে সুজি আমার সঙ্গে ছিল, দেখলাম কয়েকটা বাচ্চা ওকে এগিয়ে এসে হাগ করল। এদের সবার কত যে ফ্যান রয়েছে আপনি ভাবতেও পারবেন না। মানুষ কিন্তু রূপান্তরকামীদের সম্বন্ধে এই সিরিয়ালটা দেখেই জানতে, বুঝতে পারছিলেন। তাই মানুষ পছন্দ করছেন না, এটা বোধহয় ঠিক কথা বলা হচ্ছে না," বলছিলেন রঞ্জিতা সিনহা। সেলফিতে এক ফ্রেমে ধারাবাহিকটির শিল্পী ও কলাকুশলীরা তার কথায়, "কেন সিরিয়ালটা বন্ধ করে দিল জানি না। হতেই পারে এটা জেন্ডার পলিটিক্স হচ্ছে। কোনও কোনও মহল হয়তো চাইছে না এভাবে রূপান্তরকামীরা এগিয়ে আসুন।" অভিনেত্রী সুজি ভৌমিকও বলছিলেন এই সিরিয়ালটি নিয়ে মানুষের আগ্রহের কথ। "আমি নানা দেশ থেকে ফ্যান মেসেজ পাই। আমার বাড়ি মুর্শিদাবাদে। সেখানে লোকে আমার বন্ধুদের ডেকে নিয়ে গিয়ে খাওয়ায় তারা আমার বন্ধু বলে। সেলফি তোলে। এমনকি কেউ যদি জানে আমার মা আমার চরিত্র রাণিমাসির মা, তাহলে মায়ের সঙ্গে সেলফি তোলে। তো কীভাবে এটা হতে পারে যে গ্রাম-মফস্বলের মানুষ সিরিয়ালটা দেখছে না!" ফিরকি ধারাবাহিকে পাচ জন তৃতীয় লিঙ্গের কলাকুশলী অভিনয় করছিলেন - এবং এটাই তাদের আয়ের প্রধান উৎস হয়ে উঠেছিল। সিরিয়ালটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কাউকে এখন নাচের আসরে গিয়ে দাঁড়াতে হবে, কেউ হয়তো বাধ্য হবেন অন্ধকারের কোনও পেশা বেছে নিতে, বলছিলেন ভৌমিক। সিরিয়াল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে - তাই তাদের সবার মন খারাপ। সাথে রোজগার নিয়ে দুশ্চিন্তাও। কিন্তু এর মধ্যেও সুজি ভৌমিক ধন্যবাদ দিচ্ছিলেন প্রযোজনা সংস্থাটিকে, যারা রূপান্তরকামী - রূপান্তরিত এবং তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের একটি সিরিয়ালের চরিত্র হিসাবে তুলে ধরেছিলেন। বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারেন: বাংলাদেশে আসছে ইসলামি বন্ড, সাধারণ বন্ডের সাথে কী পার্থক্য? যুক্তরাজ্যে আরো একটি নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাস শনাক্ত, উৎসস্থল দক্ষিণ আফ্রিকা আঙ্গুলের ছাপ না থাকায় চরম বিড়ম্বনায় বাংলাদেশের একটি পরিবার কীভাবে বিজ্ঞানীদের চোখে ধরা পড়লো করোনাভাইরাসের মিউটেশন তৃতীয় লিঙ্গের কয়েকটি চরিত্রকে কেন্দ্র করে 'ফিরকি' নামে যে ধারাবাহিকটি চলছে প্রায় এক বছর ধরে, সেটি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জনপ্রিয় ভারতীয় চ্যানেল জি বাংলা। +text: এবার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা গ্যারি কন গত কিছুদিন ধরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ উচ্চপদস্থ অনেকে বিদায় নিয়েছেন। সে ধারাবাহিকতায় এখন শীর্ষ অর্থনৈতিক উপদেষ্টাও পদত্যাগ করবেন। আরো পড়ুন: বার্তাবাহী বোতলটি সমুদ্রে ছোঁড়া হয় ১৩২ বছর আগে মাদ্রাসায় কেন পুড়লো হাজারো মোবাইল ফোন? মি: কন ছিলেন মুক্ত বাণিজ্যের একজন সমর্থক। কিন্তু ইউরোপ থেকে স্টিল এবং অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর শুল্ক আরোপের যে পরিকল্পনা ট্রাম্প নিয়েছেন, তা নিয়ে এই অর্থনৈতিক উপদেষ্টা খুশি ছিলেন না বলে সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে। হোয়াইট হাউজ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে যে মি: কন দেশের সেবা করার বিষয়টিকে বেশ সম্মানের বলে মনে করেন। গত বছর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে কর সংস্কার করেছিলেন সেখানে মি: কন-এর ভূমিকা ছিল। অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে মি: কন-এর ভূমিকার প্রশংসা করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কিন্তু তাদের দু'জনের মধ্যে সম্পর্ক খুব একটা ঘনিষ্ঠ ছিল না। মি: কন ঠিক কবে নাগাদ পদত্যাগ করবেন সেটি সুনির্দিষ্টভাবে এখনও জানা যায়নি। এদিকে অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে মি: কন-এর ভূমিকার প্রশংসা করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এর আগে এক টুইট বার্তায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, হোয়াইট হাউজে কোন বিশৃঙ্খলা নেই। এখনও কিছু লোক আছেন যাদের তিনি পরিবর্তন করতে চান। গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত হোপ হিকস পদত্যাগ করেন। তিনি ছিলেন হোয়াইট হাউজের কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শীর্ষ অর্থনৈতিক উপদেষ্টা গ্যারি কন পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন বলে হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে। +text: এরশাদের পদত্যাগের পর রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আহমদের সাথে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি 'যা চেয়েছিলাম তা হয় নি', 'অনেকগুলো নির্বাচন হয়েছে, কিন্তু যাদের দেখছি তারা একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ' - এমনটাই বলছেন অনেকে। বাংলাদেশে এরশাদ সরকারের পতনের ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। গণআন্দোলনের মুখে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর অবসান ঘটে জেনারেল এইচ এম এরশাদের শাসন। বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাঁক বলে মনে করা হয় এই আন্দোলনকে। কিন্তু এই ২৫ বছরে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ���তটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে? সাধারণ মানুষ কি মনে করছে? ১৯৯০ সালে জেনারেল এরশাদ সরকারের পতনটি ছিল একটি দীর্ঘ রাজনৈতিক আন্দোলনের ফসল। যে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল বাংলাদেশের তৎকালীন এবং বর্তমান প্রায় সকল বড় রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। সেই আন্দোলনে সফলতার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ প্রবেশ করেছিল একটি নতুন সময়ে, যেখানে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং জনগণের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হবার আশা ছিল সবার মধ্যে। কিন্তু সেই আশা কতটা পূরণ হয়েছে? “আমরা যেটা চেয়েছিলাম সেটা হয়নি। যেই শ্রেণীর হাতে ক্ষমতা, তারা একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং জনগণের মঙ্গলার্থে একটি শাসনব্যবস্থা মনেপ্রাণে চায়নি।” বলেন মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, ৯০ এর আন্দোলনের সময় তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তার মতো ঢাকায় সাধারণ মানুষদের অনেকেই রাজনীতি নিয়ে সন্তুষ্ট নন। “আমরা যাদের দেখছি তারা মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। এটাতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছি আমরা।” বলেন আরেকজন পথচারী। কিন্তু এই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার গুরুদায়িত্ব যাদের হাতে ছিল, সেই রাজনীতিবিদরা এই হতাশার দায়ভার কতটা নিচ্ছেন? আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নুহ উল আলম লেনিন বলছেন, সামরিক এবং স্বৈরাচার শাসন থেকে উত্তরণ এবং সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা ৯০এর গণআন্দোলনের বড় অর্জন।কিন্তু তার মতে, আরো অনেক কিছু করার আছে এবং এজন্যে সময়ের প্রয়োজন। “এই অর্জনের পথে বাধা আছে। সাম্প্রদায়িকতা আছে, জঙ্গিবাদ আছে, মৌলবাদ আছে, সুপ্তভাবে হলেও অসহিঞ্চুতা আছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ইংল্যান্ডের যেমন ২০০ বছর সময় লেগেছিল, আমাদেরও কিছুটা লাগবে। এতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।” বলেন মি. লেনিন। বাংলাদেশের অপর প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিও মনে করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে প্রতিকূলতা রয়েছে। কিন্তু এই পথে একটি বড় বাধা পড়েছে বলে মনে করছেন বিএনপির সিনিয়র নেতা ড. ওসমান ফারুক। তিনি বলছেন, ব্যর্থতা রাজনীতিবিদদের রয়েছে, তবে এর বাইরেও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বাধা আসছে এবং সেটিকেই তারা বড় করে দেখছেন। “শত প্রতিকূলতা স্বত্ত্বেও ৯০ সালের পর তিনটি নির্বাচন হয়েছে এবং তিনটি সরকার সুষ্ঠুভাবে কাজ করেছে। এ ধারা ব্যাহত হয়েছে যখন ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনের নেতৃত্বে আরেকটি স্বৈরাচারী সরকার এলো। যদি তারা এই ধারা ব্যাহত না করতো, তাহলে হয়তো এতদিনে আমরা ট্রায়াল এন্ড এররের মাধ্যমে বহুদলীয় গণতন্ত্র আরো সুসংহত করতে পারতাম।” বলেন মি. ফারুক। তবে যেই সরকারকে হটিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, সেই এইচ এম এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিও এখন বাংলাদেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাদের বক্তব্য হল, গণতন্ত্র রক্ষায় তারা সেসময় ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছিলেন। দলটির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন বাবলু বলছেন, কিন্তু এরপর বড় রাজনৈতিক দলগুলো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় উপযুক্ত ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, “২৫ বছর ধরে দুটি দল পালাবদল করে মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো সরকারে ছিল। তাদের দায়িত্বই সবচেয়ে বেশি ছিল।” গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতিষ্ঠা নিয়ে বাংলাদেশে তর্ক-বিতর্ক আগেও ছিল এবং এখনো রয়েছে। নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা নিয়ে অসন্তোষও রয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এই বিতর্ক কবে শেষ হবে সেটি হয়তো কেউ বলতে পারছেন না, তবে রাজনীতিবিদরাও মনে করেন সহসাই বাংলাদেশে এই বিতর্ক শেষ হচ্ছে না। বাংলাদেশে ১৯৯০-এ যে গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে সেনাশাসনের যুগের অবসান হয়েছিল - তার ২৫তম বার্ষিকীতে অনেকেই বলছেন যে গণতন্ত্রের প্রত্যাশা তারা করেছিলেন তা পূর্ণ হয় নি। +text: যুক্তরাজ্যে লাখ লাখ মানুষ আধুনিক দাসত্বের শিকার বলে বলছে একটি সংস্থা যতটা ভাবা হয়েছিল, ব্রিটেনে আধুনিক দাসত্বে থাবা তারচেয়েও অনেক বেশি বলে বলছে ব্রিটেনের জাতীয় অপরাধ সংস্থা বা এনসিএ। এনসিএ বলছে, এর আগে জানা গিয়েছিল যে, প্রায় ১৩ হাজার মানুষ পাচারের শিকার হয়ে বা জোরপূর্বক কাজে বা দাসত্বে ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে সেই সংখ্যা আসলে অনেক বেশি, যে ঘটনা ঘটেছে ব্রিটেনের প্রায় প্রতিটি বড় শহর আর নগরে। দেশটিতে এখন তিনশো অভিযোগের তদন্ত চলছে। তবে লাখ লাখ মানুষ আধুনিক দাসত্বের শিকার হয়েছে বলে তারা ধারণা করছে। এনসিএ পরিচালক উইল কের বলছেন, আমরা যতই খুঁজছি, ততই এরকম ঘটনার দেখা পাচ্ছি। আরো পড়তে পারেন: 'মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মুহাম্মদ' হলো 'মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা' রায় নিয়ে আইনগতভাবে লড়বো: আইনমন্ত্রী ইউরোপের ক্যাম-গার্লদের গল্প তিনি বলছেন, আপনার দৈনন্দিন জীবনেও আনি হয়তো এমন কারো দেখা পেয়েছেন বা সংস্পর্শে এসেছেন, যে হয়তো এরকম দাসত্বের শিকার। আলবেনিয়���, নাইজেরিয়া, ভিয়েতনাম, রোমানিয়া আর পোল্যান্ড থেকে আসা মানুষজনই এরকম দাসত্বের বেশি শিকার হয়েছে। তবে যুক্তরাজ্যের কেউ কেউ রয়েছেন, যারা এই খপ্পরে পড়েছেন। ভালো চাকরি, শিক্ষা এমনকি প্রেমের অভিনয়ে এদের যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসা হয়। এরপর আধুনিক দাসত্বে আটকে ফেলা হয়। আধুনিক দাসত্বে মধ্যে যৌন শোষণ ছাড়াও সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রে ব্যবহার, কৃষি, নির্মাণ বা পারিবারিক কাজে জোরপূর্বক বাধ্য করার মতো অপরাধ রয়েছে। ভুক্তভোগীদের মধ্যে রয়েছে সব বয়সের পুরুষ, নারী ও শিশুরাও। যুক্তরাজ্যের শহরগুলোয় লাখ লাখ মানুষ আধুনিক দাসত্বের শিকার বলে বলছে দেশটির একটি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা। +text: চকবাজারের আগুনের ছবি তারা বলছিলেন, "নতুন ভবনের বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা আমরা পুরনোটার সাথেই করতে চেয়েছিলাম কিন্তু ইঞ্জিনিয়াররা না বলেছেন, কারণ লোড নিতে পারবে না।" শওকত আরা বলছেন, "আমরা কখনো পুরনো বিল্ডিংটার তার বা বিদ্যুতের অন্যান্য বিষয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করি নাই। এতদিন তো কোন সমস্যা আল্লাহর রহমতে হয়নি।" কিন্তু ইদানীং অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলো সম্পর্কে খবরে নানা তথ্য বের হচ্ছে। তাতে তিনি ভিন্নভাবে চিন্তা করছেন বলে জানিয়েছেন। ঢাকার বড় মগবাজারে একটি ফ্ল্যাটের মালিক মাফরুহা খানম ও তার স্বামী। তিনি বলছেন, "আসলে আপনার কথা থেকে আমি এখন বুঝতে পারছি আমি নিজে ওভাবে ভবনের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা থেকে কিভাবে অগ্নিকাণ্ড হয় সেসব নিয়ে খুব একটা জানিনা বা গুরুত্বও দেই না। কারেন্টের তার তো আছে কিন্তু তা থেকে যে আগুন লাগতে পারে সেটি ওইভাবে মাথায় কাজ করে না। শর্ট সার্কিট সম্পর্কে শুনেছি শুধু।" কিন্তু তিনি বারান্দায় গিয়ে দেখালেন রাস্তার খুঁটি থেকে বিদ্যুতের তার বাড়ির আশপাশে বিভিন্ন ভবনের দিকে কিভাবে মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে গেছে। তার বাড়িতে প্রবেশের পথ এতটাই সরু যে সেখানে দমকল বাহিনীর কোন গাড়ি পৌঁছাতে পারবে না। তার ভবনের অন্ধকার সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে তিনি কতদূর পৌঁছাতে পারবেন সেনিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছিলেন তিনি। বনানীর আগুন নিয়ন্ত্রণে দেরি হওয়ার যে কারণ আবাসিক ভবনে অগ্নি নিরাপত্তায় যা ভুলবেন না ছবিতে পুরনো ঢাকার চকবাজারের আগুন ওভারলোডিং, শর্ট সার্কিট ও আর্কিং থেকে বাসা বাড়িতে বেশি আগুন লাগে,বলছে ফায়ার সার্ভিস কিভাবে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা থেকে অগ্নিকাণ���ড ঘটে বাংলাদেশে ফায়ার সার্ভিসের তথ্য মতে ২০১৮ সালে সারা দেশে ১৭ হাজারের মতো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকাতেই সাড়ে চার হাজারের মতো অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। দমকল বাহিনী আরও বলছে শহরে অগ্নি দুর্ঘটনার ৭৫ শতাংশই বৈদ্যুতিক ব্যবস্থায় নানা সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। কিন্তু কি কারণে এমনটা ঘটছে? ওভারলোডিং, শর্টসার্কিট ও আর্কিং। এই তিনটি সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বলে জানালেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের অপারেশন্স ও মেইনটেন্যান্স বিষয়ক পরিচালক মেজর এ কে এম শাকিল নেওয়াজ। তিনি বলছেন, "বেশির ভাগ মানুষ টাকা বাঁচানোর চিন্তা করে। বিশেষ করে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো বা ব্যবসায়িক বিষয় যাদের মাথায় বেশি থাকে, তারা টাকা বাঁচাতে গিয়ে কম দামি জিনিসপত্র কেনে। কিন্তু বৈদ্যুতিক ব্যবস্থার সাথে জড়িত তার, সকেট, সার্কিট ব্রেকার এসব কিছুই সস্তা কথাটা মাথায় রেখে কেনা উচিৎ না। এটা হতে হবে বাজারের এক নম্বর।" অগ্নি দুর্ঘটনা নিয়ে গবেষণা করেন বুয়েটের অধ্যাপক মাকসুদ হেলালি। তিনি বলছেন, "বেশির ভাগ ভবন যখন তৈরি হয় প্রথম পর্যায়ে তারা এক ধরনের লোড ক্যালকুলেটর করে। তখন সব কিছু ঠিকঠাক থাকে। কিন্তু আস্তে আস্তে সেই ভবন যারা ভাড়া নেন তারা নতুন অনেক অ্যাপ্লায়ান্স লাগাতে থাকেন।'' ''যেমন একটা অফিস বিল্ডিং এ একটার পর একটা এসি লাগানো হয়। তখন যে ব্যবস্থা তারা শুরুতে লাগিয়েছিল সেটি তার লোড টানার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। ছোট খাট পরিবর্তন হলেও প্রধান ডিস্ট্রিবিউশন লাইন পরিবর্তন করে না প্রায় কেউই। এতে তারগুলো গরম হতে থাকে, ডিস্ট্রিবিউশন বক্সে স্পার্ক করতে পারে। বেশি লোড তৈরি করা অগ্নিকাণ্ডের অন্যতম কারণ" মেজর নেওয়াজ আরও কয়েকটি কারণের মধ্যে উল্লেখ করলেন 'আর্কিং' বলে একটি বিষয়। তিনি বলছেন, এটি বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা থেকে অগ্নিকাণ্ডের অন্যতম কারণ। বিদ্যুতের তারের সাথে কোনভাবে আর্দ্রতা বা স্যাঁতসেঁতে অবস্থার সংযোগ হলে এটি ঘটে। অনেকদিন ধরে রোদে বৃষ্টিতে থাকা ক্ষয় হয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তারে প্রায়ই এটি ঘটে থাকে। এর ফলে যে বিস্ফোরণ হয় তা অত্যন্ত উচ্চ তাপ সম্পন্ন। এতে আশপাশের অনেক কিছুতে আগুন ধরে যেতে পারে। তিনি আরও বলছেন, কোন বিদ্যুৎ বিষয়ক প্রকৌশলীদের কাছে না যাওয়ার একটা প্রবণতা রয়েছে বাংলাদেশে। লাইসেন্স নেই কিন্তু অন্য কারো কাছে প্রশিক্ষণ নেয়া বিদ্যুতের মিস্ত্রিকে দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করানোর ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করছেন তিনি। বাড়ি থেকে বের হলে বা এমনকি এক কক্ষ থেকে অন্য কক্ষে গেলেও বিভিন্ন টেলিভিশন, ফ্যান বা কম্পিউটারের মতো যন্ত্রপাতি বন্ধ করে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন মেজর নেওয়াজ। অনেক বাড়ির সাথে এভাবে জড়িয়ে থাকে বিদ্যুত সংযোগের তার ঠেকাতে কী করনীয় বড় ব্যবসায়িক ভবনে ফায়ার স্টপার লাগানো যেতে পারে। সকল ভবন বা বাসাবাড়িতে একটা ফায়ার এক্সটিংগুইশার রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন মেজর নেওয়াজ। "নিয়মিত সেটির মেয়াদ পরীক্ষা করা উচিত। বিদ্যুৎ বিষয়ক অগ্নিকাণ্ডের জন্য কার্বন মনোক্সাইড দিয়ে তৈরি ফায়ার এক্সটিংগুইশার ব্যাবহার করতে বলছেন তিনি। কিন্তু সেটি ব্যবহারের আগে বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ করে নিতে হবে। ফায়ার সার্ভিসকে সময়মত খবর দিতে হবে। কোন বাড়তি তার জোড়া লাগিয়ে কোন কিছুর সংযোগ প্রদান থেকে বিরত থাকা উচিত। মাল্টি প্লাগ দিয়ে অনেক যন্ত্র না চালানোই উচিৎ"। মাল্টি-প্লাগ অস্থায়ীভাবেই ব্যবহার করা উচিৎ। কোনকিছু যন্ত্র চালানোর স্থায়ী সংযোগ এটি হওয়া উচিত নয়। এগুলোর ক্ষমতা এর গায়েই লেখা থাকে। সেটি মেনে চলা উচিৎ। প্রতি ছয় মাস অন্তর বাড়ির তার ও অন্যান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পরীক্ষা করার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি। বাড়িতে কিছুটা প্রশিক্ষণ থাকা জরুরী। শাকিল নেওয়াজ বলছেন, "আগুন কিন্তু শুরুতেই বড় হয়না। ছোট থাকতেই সেটি যদি নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেটিই সবচাইতে উত্তম পন্থা। অনেকেই আগুন দেখেই বের হয়ে যান। এমনকি ফায়ার সার্ভিসকেও খবর দেন না। তাই আগুন বড় হয়ে যায়।" আর শুরুতেই যেগুলো উল্লেখ করা হচ্ছিলো সেই মোতাবেক মান সম্পন্ন বৈদ্যুতিক তার ও অন্যান্য সরঞ্জাম ব্যবহার করা, ভবনে যতটুকু ব্যবস্থা তার বাইরে বাড়তি চাপ না দেয়া এবং প্রশিক্ষিত টেকনিশিয়ান ব্যবহার করা। এসব মেনে চললে অনেকটাই বিপদ মুক্ত থাকা যায়। ঢাকার বাসাবোর শওকত আরা ও তার পরিবার ১৯৯৫ সালে প্রথম নিজেদের বাড়ি করেন। এরপর সাথেই পাঁচতলা একটি ভবনও নির্মাণ করেছেন। +text: বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর পরই চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য সরবরাহ করা মাস্ক, পিপিই নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা টিআইবি বলেছে, এখন সুনির্দিষ্ট কোন নীতিমালা অনুসরণ না করে স্বাস্থ্য��াতের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে কেনাকাটা করা হচ্ছে এবং তাতে অনেক জিনিস বাজার মূল্যের কয়েকগুণ বেশি দামে কেনার মতো অনিয়ম হচ্ছে। সংস্থাটি আরও বলেছে, মহামারির সময় পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে স্বাস্থ্যখাতের এক শ্রেনীর কর্মকর্তার সহায়তায় কেনাকাটায় অনিয়ম দুর্নীতি করার চিত্র তাদের গবেষণায় ফুটে উঠেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন বলেছে, দেশে করোনাভাইরাস শুরুর আগের কয়েকমাসে তারা স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির অভিযোগে ১১টি মামলা করেছে এবং এখন সুরক্ষা সামগ্রীর দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিচ্ছিন্ন দু'একটি ঘটনা ছাড়া স্বাস্থ্য খাতের সব কেনাকাটা সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে করা হচ্ছে। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর পরই গত মার্চ মাসে সরকারের কেন্দ্রীয় ঔষাধাগার থেকে সরবরাহ করা এন৯৫ মাস্ক এবং পিপিইসহ স্বার্স্থকর্মিদের সুরক্ষা সামগ্রীর মান নিয়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছিল। ঢাকার মুগদা জেনারেল হাসপাতাল থেকে কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছেল যে, প্যাকেটে এন৯৫ লেখা থাকলেও নিম্নমানের মাস্ক এবং পিপিই দেয়া হয়েছে। তখন ব্যাপক আলোচনার মুখে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তদন্ত করলেও তার ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি। দুর্নীতি বিরোধী সংগঠনগুলো বলছে, স্বাস্থ্যখাতে জরুরীভিত্তিতে কেনাকাটায় সুনির্দিষ্ট নীতিমালা মানা হচ্ছে না। দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সী ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বা টিআইবির নির্বাহি পরিচালক ড: ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, সুরক্ষা সামগ্রীতেই দুর্নীতি থেমে থাকেনি। চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রেও উদ্বেগজনকহারে দুর্নীতি বৃদ্ধির তথ্য তারা গবেষণায় পেয়েছেন। "ব্যাপকভাবে আলোচনা শুরু হয় এন৯৫ মাস্ক ক্রয়ের কেলেংকারি নিয়ে। এরপরে আরও দেখা যাচ্ছে,কেনাকাটায় এই একই ধরণের অনিয়ম হচ্ছে। এমনকি মৌখিকভাবে কার্যাদেশ দেয়া হচ্ছে। আসলে এটা যোগসাজশ করে আদায় করা হচ্ছে। যে ব্যবসায়ী বা সরবরাহকারী রয়েছে, তাদের সাথে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ার সাথে থাকা কর্মকর্তাদেরও কেউ কেউ এই অনিয়মের অংশীদার হচ্ছেন।" তিনি আরও বলেছেন, "স্বাস্থ্য খাতে অবকাঠামো দূর্বল, এটা নতুন কথা নয়। কিন্তু এখন কোভিড-১৯ সংকটের কারণে এটা আরও ব্যাপকভাবে প্রকাশ হলো বা জানা গেলো। দেখা যাচ্ছে, যে সব জিনিস ক্রয় করা হচ্ছে, সেটার জন্য বাজারের যে মূল্য, তার থেকে পাঁচ থেকে দশ গূণ বেশি মূল্যে কেনা হচ্ছে। এ রকম সুনির্দিষ্ট তথ্য আছে। এটা ব্যাপকহারে হচ্ছে।" ড: ইফতেখারুজ্জামানের বক্তব্য হচ্ছে, যেহেতু স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহালদশা অনেক পুরোনো। সেজন্য এখন মহামারি সামাল দিতে এই খাতে চিকিৎসা সরঞ্জাম ব্যাপকহারে কিনতে হচ্ছে। আর এই কেনাকাটা তাৎক্ষণিক নির্দেশে এবং অনেক ক্ষেত্রে মৌখিকভাবে করা হচ্ছে, এমন চিত্র তারা পেয়েছেন। মাস্কসহ সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে কেলেঙ্কারির ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক কোন ব্যবস্থা না নেয়ার কারণেও দুর্নীতি বন্ধ করা যায়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর আগের কয়েকমাসে স্বাস্থ্য খাতে কেনাকাটায় দুর্নীতি নিয়ে ১১টি মামলা করে দুদক। এখন করোনাভাইরাস সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার জন্য স্বাস্থ্য বিষয়ক অনেক ভিডিও তৈরি করা হচ্ছে এবং অনেক ধরণের প্রচারণাও চালানো হচ্ছে। এসব কাজের ক্ষেত্রেও অর্থ ব্যয়ের স্বচ্ছ্বতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনকারিদের। তারা বলেছেন, কেনাকাটা এবং প্রচারণার কাজের জন্য নতুন নতুন ব্যক্তিগত কিছু প্রতিষ্ঠান গজিয়েছে, এমন তথ্যও তারা পেয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা মনে করেন, স্বাস্থ্য খাতে কেনাকাটায় দুর্নীতির সাথে যে ঠিকাদার বা সরবরাহকারিরা জড়িত থাকে বিভিন্ন সময়, এখন করোনাভাইরাস দুর্যোগের সুযোগ নিয়ে সেই শ্রেনি আর নগ্নভাবে তা করছে। "স্বাস্থ্য খাতে যে দুর্নীতি, তা কোভিড-১৯ এর প্রেক্ষাপটে স্পষ্ট করে দিয়েছে যে কতটা দুর্নীতি হয়। কেনাকাটার ক্ষেত্রেই দুর্নীতিটা বেশি হচ্ছে। মেডিসিন যেসব সরকারিভাবে কেনা হচ্ছে, সেগুলো ভাল কোম্পানি থেকে নেয়া হচ্ছে না।এমন সব কোম্পানি থেকে এমন সব ঔষধ নেয়া হচ্ছে, যেগুলো ডাক্তাররা প্রেসক্রিপশনেও লেখে না।" "আমাদের আইসিইউ এর অভাব আছে, অক্সিজেনের অভাব আছে। বিভিন্ন জিনিসের অভাব আছে। আর এসব কেনাকাটায় আমরা দুই টাকার জিনিস ২০০০ টাকা পর্যন্ত দেখাচ্ছি। এখন এই দুর্যোগে যে সঠিক জিনিসটা দেয়া প্রয়োজন, তারা সেটাই ভূলে গিয়েছে।" বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোয় পর্যাপ্ত শয্যা ও আইসিইউর অভাব রয়েছে স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তবে গত বছরের শেষে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পর্দা কেনা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছিল। হাসপাতালটিতে যন্ত্রপাতিসহ বিভিন্ন জিনিস কেনাকাটার ক্ষেত্রে একটি পর্দা কিনতেই দাম দেখানো হয়েছিল ৩৭ লাখ টাকা। এমন অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর আগের চার মাসে অর্থ্যাৎ গত বছরের নভেম্বর থেকে এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত সময়ে পর্দা কেলেংকারিসহ স্বাস্থ্যখাতে দুদক ১১টি দুর্নীতির মামলা করেছে। এখন মাস্কসহ সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করা হচ্ছে বলে দুদক চেয়ারম্যান উল্লেখ করেছেন। "স্বাস্থ্য খাতে অভিযোগ আমরা আগে থেকেই পাচ্ছিলাম। এবং আমরা এপর্যন্ত প্রায় ১১টি মামলা করেছি স্বাস্থ্য খাতের কেনাকাটার বিষয় নিয়ে। অনেকেই বিহাইন্ড দ্য বার গেছেন। অনেকে আবার দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। ১১টি মামলার আসামী অনেক। এখানে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা কর্মচারীরাও রয়েছে।আ মরা এই দুর্নীতিগুলো বন্ধ করার চেষ্টা করছিলাম। এরইমাঝে মাস্ক, পিপিই নিয়ে অভিযোগ এসেছে এবং তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।" তিনি আরও বলেছেন, এরই মাঝে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর মাস্কসহ সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে। সেটা আমরা টিম গঠন করে দিয়ে অনুসন্ধান করছি।" করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে ১০,০০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই অর্থ ব্যয়ে দুর্নীতি রোধ করা কতটা সম্ভব হবে-তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলকারিরা। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেছেন, মাস্কসহ সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে অনিয়মের অভিযোগের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এটিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসাবে উল্লেখ করে এই কর্মকর্তা বলেছেন, সরকারি নীতিমালা অনুসরণ করে জরুরিভিত্তিতে স্বাস্থ্যখাতের সব কেনাকাটা করা হচ্ছে স্বচ্ছ্বতার সাথে। কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড���াতে পারে কি? বিশ্ব মহামারি শেষ হতে কতদিন লাগবে? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় করোনাভাইরাস নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন বাংলাদেশে করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবেলায় স্বাস্থ্য খাতে মাস্কসহ সুরক্ষা সামগ্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনাকাটায় অনিয়ম-দুর্নীতি উদ্বেগজনকহারে বৃদ্ধির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। +text: করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে গত মাসে ইসলামের পবিত্র স্থান কাবা সংলগ্ন এলাকা খালি করে জীবাণুনাশক ছেটানো হয়েছিল। এর আগে শহরগুলোতে ১৫ ঘণ্টার কারফিউ জারি করা হয়েছিল এবং মানুষকে বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশই এখন দীর্ঘায়িত করা হলো। এমন সময় এই ঘোষণা এলো যখন জুলাই ও অগাস্টে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া হজ নিয়েই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। করোনা ভাইরাস: শত দুঃসংবাদের মাঝেও কিছু মন-ভালো করা খবর করোনাভাইরাস সম্পর্কে অজানা কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন করোনাভাইরাসের উৎপত্তি কোথায়, কেন এতো প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরিতে অগ্রগতি কতদূর? মক্কা ও মদিনায় কারফিউ জারি করেছে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ গত সপ্তাহে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ মহামারি নিয়ে উদ্বেগের কারণে হজ করতে ইচ্ছুকদের বুকিং পেছানোর আহ্বান জানায়। হজের সময় সারাবিশ্বের প্রায় বিশ লাখ মুসলিম মক্কা ও মদিনায় জমায়েত হন। কোভিড-১৯ সংক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টায় সৌদি কর্তৃপক্ষ মানুষজনকে মক্কা ও মদিনা এবং সেইসঙ্গে রাজধানী রিয়াদেও ঢুকতে দিচ্ছে না। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনাভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে সৌদি আরবে। সেখানে এখন পর্যন্ত ১,৮৮৫ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ইসলাম ধর্মের দুই পবিত্র শহর মক্কা ও মদিনায় ২৪ ঘণ্টার জন্য কারফিউ জারি করেছে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ। +text: উপজেলার শিবরাকান্দি, বহেরাতলা এবং চর বাঁচামারা গ্রামে একাধিক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হওয়ায় সেখানে বেড়াতে আসা প্রবাসীদের সেইসঙ্গে স্থানীয় এলাকাবাসীদের বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত��রের দোকানপাট ছাড়া উপজেলার সব ধরণের রেস্তোরাঁ, চায়ের দোকান বা এমন কোন স্থান যেখানে মানুষের সমাগম হতে পারে সেগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানান মি. ইসলাম। এ ছাড়া শিবচরের ভেতরে গণপরিবহনের চলাচলও বন্ধ রাখা হয়েছে। স্থানীয় সাংবাদিক এবং এলাকাবাসীও জানিয়েছেন যে আজ সকাল থেকে গোটা শিবচরে মানুষের চলাচল ছিল অনেক সীমিত। প্রয়োজনীয় বাজার করা ছাড়া কেউ সেভাবে বের হতে দেখা যায়নি। এ ব্যাপারে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্যকর্মী। মি. ইসলাম বলেন, "শিবচরের ওই এলাকাগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে হওয়ায়, সেখানে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছি। সেখানকার আক্রান্ত ব্যক্তিরা এই ভাইরাস ছড়াতে পারে তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমরা সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য বাধ্য করছি। লকডাউন করা ছাড়া পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা প্রায় অসম্ভব।" পরিস্থিতি বিবেচনায় শিশুরা বাড়িতেই খেলাধুলা করছে। শিবচরের পাঁচচর ইউনিয়নের গোয়ালকান্দা গ্রামের বাসিন্দা সালমা বেগম আগে কখনও তার এলাকায় এতো থমথমে পরিবেশ দেখেননি। "শিবচরে মানুষ খুব কম চলাফেরা করতেসে। গাড়িঘোড়া চলতেসে না। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউই বাইরায়না। এরকম একটা ঘটনা সবাই আতঙ্কের মধ্যে আছে। পোলাপানের স্কুল মাদ্রাসা বন্ধ হয়া গেসে। ওদেরে বাইরে খেলতে দেইনা" বলছিলেন তিনি। জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হচ্ছে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে উপজেলা জুড়ে ব্যাপক সচেতনতামূলক প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, কাশি শিষ্টাচার, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেটা মাইকিং করে, লিফলেট বিতরণ করে, পোস্টার টানিয়ে এবং মসজিদের ইমামের মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। তবে করোনাভাইরাস যদি পুরো কমিউনিটিতে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয় সেক্ষেত্রে পুরো এলাকা লকডাউন করার বিধান আছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকৌশলে। গতকাল এক প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন যে, প্রয়োজন হলে তিনি পুরো উপজেলা লকডাউনের সিদ্ধান্ত দেবেন। আরও পড়তে পারেন: করোনাভাইরাস: 'লকডাউন' করা হলো মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা করোনাভাইরাস গাইড: আপনার প্রশ্নের উত্তর করোনাভাইরাস: বাংলাদেশে মসজিদে নামাজ নিয়ে কী হবে? বিদেশ ফেরত প্রবাসীরা উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি গণবিজ্ঞপ্তি দেয়। জেলা প্রশাসক মি. ইসলাম বলেন, "আজকে জুমার নামাযের বয়ানে আমরা প্রচারণা করছি যে, মানুষ যেন করোনাভাইরাস প্রতিরোধে তৎপর থাকেন। কারও হাঁচি কাশি-জ্বর থাকলে বা খুব বয়স্ক ব্যক্তি হলে তারা যেন বাসায় নামাজ আদায় করেন, জামাতে না আসেন। এছাড়া সভা সমাবেশ, ভিড় ভাট্টা, কোচিং, ধর্মীয় সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলার আসর ইত্যাদি বন্ধ করেছি"। গতকাল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে লকডাউনের সিদ্ধান্ত আসার পর সেটা শিবচরের বাস মালিকদের গণপরিবহন বন্ধ রাখতে ও বণিক সমিতিকে দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়। বর্তমান পরিস্থিতি বুঝতে পেরে কেউ এতে কোন আপত্তি করেনি বলে জানান উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শামসুদ্দিন খান। রাস্তাঘাটে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে। একজন বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন। তাদের বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে কাজ করার কথাও জানান মি. খান। তিনি বলেন, "ইতালি, ফ্রান্সসহ মধ্যপ্রাচ্য থেকে গত একমাসে ৬১৩ জন প্রবাসী এখানে এসেছেন। আমরা স্থানীয় মানুষের সহায়তায় তাদেরকে খুব নজরদারিতে রেখেছি। বিশেষ করে গত দুই সপ্তাহে যারা এসেছেন। কারণ অনেকে আসার পর কাউকে জানায় না। লুকায়া থাকে। তখন আমরা তাদেরকে খুঁজে বের করে বলি যে তারা যেন ঘরের বাইরে না যায়। লক্ষণ দেখা গেলে যেন জানায়।" "ইতোমধ্যে আমরা প্রবাসী কয়েকজনের মধ্যে করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখে তিনি তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের মধ্যে ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন আছেন" জানান মি. খান। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার তিনটি এলাকা আজ থেকে লকডাউন করে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম। +text: সেরেনিটাস এন নামের কয়লাবাহী জাহাজটি থেকে পণ্য খালাস বন্ধ রাখা হয়েছে এখন। সেরেনিটাস এন নামের জাহাজটি মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী। ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা বোঝাই করে সিঙ্গাপুর ও চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে বুধবার রাতে মোংলা বন্দরে এসে পৌঁছায় জাহাজটি। রাতেই বন্দর ���েটি থেকে কুড়ি কিলোমিটার দূরবর্তী হারবাড়িয়া নামক এলাকায় নোঙর করে জাহাজটি। এলাকাটি সুন্দরবনের প্রবেশপথ হিসেবে পরিচিত। সুন্দরবন ভ্রমণকারী পর্যটকবাহী নৌযানগুলো সাধারণত এই হারবাড়িয়া পয়েন্ট থেকেই জঙ্গলে প্রবেশ করে। মোংলা বন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বা পোর্ট হেলথ অফিসার সুফিয়া বেগম বিবিসি বাংলাকে বলেন, জাহাজের তিনজন ক্রুর শরীরে উচ্চ তাপমাত্রা রয়েছে। তিনজনই ফিলিপিন্সের নাগরিক। করোনাভাইরাস উপদ্রুত এলাকায় গিয়ে যা দেখলো বিবিসি বাংলাদেশের বন্দরগুলোতে কোন বিদেশি জাহাজ নোঙর করলে সে জাহাজের নাবিক এবং ক্রুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে পোর্ট হেলথ অফিসার। বুধবার রাতে জাহাজটি মংলা বন্দরের নোঙর করার পর পোর্ট হেলথ অফিসার সেখানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়ে তিনজন ক্রুর দেহে উচ্চমাত্রা শনাক্ত করেন। এরপর বিষয়টি জানানো হয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট বা আইইডিসিআরকে। আইইডিসিআর-এর পরামর্শে জ্বরে আক্রান্ত নাবিকদের জাহাজের ভেতরে তিনটি আলাদা কক্ষে রেখে স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সুফিয়া বেগম জানিয়েছেন, তিনজন ক্রুর মধ্যে দুজনের দেহের তাপমাত্রা গতরাতে তুলনায় কমলেও একজনের দেহে এখনো উচ্চ তাপমাত্রা রয়েছে। সুফিয়া বেগম জানান, করোনাভাইরাস পর্যবেক্ষণের জন্য ক্রুদের দেহ থেকে কোন নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। এখন তাদের আপাতত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। মোংলা বন্দরের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল হামিদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, জাহাজটি কয়লা নিয়ে সিঙ্গাপুর থেকে চট্টগ্রাম হয়ে মংলা বন্দরে আসে। মি. হামিদ জানান এই জাহাজের ক্যাপ্টেন একজন গ্রিক এবং ক্রুদের অনেকেই ফিলিপিনো। সবমিলিয়ে জাহাজটিতে ২০ জন ক্রু রয়েছে। এই জাহাজে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হবার পরেই পণ্য খালাস শুরু হবে বলে জানিয়েছেন মিঃ হামিদ। তিনি বলেন, যে কোন বিদেশি জাহাজ বন্দরে নোঙর করলে সাধারণত ক্রুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। সম্প্রতি করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতার কারণে এই স্বাস্থ্য পরীক্ষা আরো জোরদার করা হয়েছে মি. হামিদ উল্লেখ করেন। আরো খবর: মস্কোতে আজ পুতিন-এরদোয়ান বৈঠক, যুদ্ধ এড়ানো যাবে কি? বিবিসি বাংলার জরিপে শ্রেষ্ঠ বাঙালি: ১৩- সত্যজিৎ রায় দম্পতির একজন মোটা অন্যজন লিকলিকে, যেভাবে দেখে সমাজ মোংলা বন্দরে নোঙর করা ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা একটি জাহাজে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নাবিক আছে- এমন সন্দেহ থেকে জাহাজটির পণ্য খালাস বন্ধ রাখা হয়েছে। +text: সিকিম সীমান্তে চীনের রাস্তা তৈরি নিয়ে প্রায় দুই মাস ধরে চীন ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা চলছে সফরের মূল উদ্দেশ্য ব্রিকস জোটের বৈঠক। তবে, বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই সফরের সুযোগে দিল্লি ও বেইজিং সীমান্তে বিপজ্জনক অচলাবস্থা নিরসনের চেষ্টা করবে। সীমান্তের বিতর্কিত একটি অংশ নিয়ে দুই দেশের কয়েক হাজার সেনা এখন আছে মুখোমুখি অবস্থানে। কিন্তু মি. দোভালের বেইজিং সফরে কি সেই অচলাবস্থা দুর হবে? সিকিম থেকে সাংবাদিক ও বিশ্লেষক সুবীর ভৌমিক বলছেন, অজিত দোভালের সফরে এই সংকটের এখনি কোন সুরাহা হবে বলে তিনি মনে করেন না। আরো খবর: নাচে-গানে যেখানে মৃতদের বিদায় জানানো হয় লন্ডনে দুই বাঙালির উপর এসিড হামলা কেন ‘খেলাফতে’ যোগ দিয়েছিলাম: আইএস যোদ্ধার স্ত্রী ভারত-চীন সীমান্ত বিষয়ক কমিটিতে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন অজিত দোভাল আর চীনের তরফ থেকে প্রতিনিধিত্ব করেন স্টেট কাউন্সিলর ইয়েঙ জিয়েচি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছিল, আলাদা করে ইয়াঙ জিয়েচির সঙ্গে একটি আলোচনার আয়োজন করার জন্য। কিন্তু চীনের তরফ থেকে উৎসাহ দেখানো না হলে, ভারতের তরফ থেকেও খুব একটা উৎসাহ দেখাতে বলা হয়নি। কিন্তু চীনের পত্রপত্রিকায় যেরকম খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তাতে পরিষ্কার যে, চীন এক্ষেত্রে খুব একটা নমনীয় না হওয়ার নীতি নিয়েছে। শর্তহীনভাবে সীমান্ত থেকে ভারতকে সৈন্য প্রত্যাহার করতে হবে। ভারতও এক্ষেত্রে খুব একটা উদ্যোগী হবে না বলেই ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে। তাহলে সমাধানের পথ কি? সুবীর ভৌমিক বলছেন, ভারতের অবস্থান হচ্ছে, যৌথ পদক্ষেপের মাধ্যমে সরে আসা। ভারত একতরফা কোন সমাধানে আগ্রহী নয়। অজিত দোভালের সঙ্গে ইয়াঙ জিয়েচির বৈঠক হলে সেখানেও এই প্রস্তাবটি করা হবে। ভুটান সীমান্তে দোকলান এলাকায় একটি রাস্তা বানাতে চাইছে চীন ভুটান সীমান্তে দোকলান এলাকায় একটি রাস্তা বানাতে চাইছে চীন। ভুটান বলছে, সেটি তাদের এলাকা। তবে চীনের দাবি, সেটি তাদের। চীন রাস্তা বানানোর কাজ শুরু করার পর ভারতের সৈন্যরা তাদের বাধা দিয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে ছোটখাটো সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। মি. ভৌমিক বলছেন, যদি ভুটান সেই জায়গা চীনকে ছেড়ে দেয়, সেটা পৃথক ব্যাপার। কিন্তু যতক্ষণ সেটি না হচ্ছে, ততক্ষণ ভারত-চীন-ভুটানকে তাদের সীমান্তের স্ব স্ব অবস্থানেই থাকতে হবে। যেহেতু চীন ভুটানের জায়গায় রাস্তা করছে আর ভারত ভুটানের স্বাধীনতা রক্ষায় চুক্তিবদ্ধ, তাই তারা সেখানে ঢুকে চীনকে বাধা দিয়েছে। এখন অজিত দোভাল চীনকে প্রস্তাব দেবেন, তোমরা এখানে রাস্তা বানানো বন্ধ করো এবং পিছিয়ে চলে যাও। দোকলান থেকে তোমরা চলে যাও, তাহলে ভারতের সৈন্যরা চলে আসবে। বলছেন মি. ভৌমিক। কিন্তু চীন যদি ভারতকে আগে সৈন্য সরাতে বলে, তাহলে কোন সমাধানের আশা ক্ষীণ, বলছেন মি. ভৌমিক। ভুটানের সঙ্গে ১৯৪৯ সাল থেকে ভারতের সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষার চুক্তি রয়েছে, যেটি ২০০৭ সালে নবায়ন করা হয়েছে। সেখানে ভুটানকে নিরাপত্তা দেয়া ও বিদেশীদের ক্ষেত্রে পরামর্শ দেয়ার মতো বিষয় রয়েছে। সুবীর ভৌমিক বলছেন, এখন যদি ভারত এখান থেকে সরে আসে, তাহলে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের কোন গুরুত্বই থাকবে না। আর তাই ভারত এখান থেকে পেছবে না। আবার চীন কোন শর্ত দিয়ে আলোচনায় বসলেও তাতে রাজি হবে না ভারত। চীন সীমান্তে সামরিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরালো করেছে উভয় দেশের মাঝে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। সীমান্ত বিরোধী নিয়ে ১৯৬২ সালে ভারত-চীন যুদ্ধও হয়েছিল, যে যুদ্ধে ভারত পরাজিত হয়। কিন্তু তারপরেও বিভিন্ন জায়গায় বিরোধ এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে এবং মাঝে-মধ্যেই সেটি মাথা চাড়া দেয়। চীন, ভুটান আর ভারতের সিকিম প্রদেশের সংযোগস্থলে একটি উপত্যকার ভেতর দিয়ে রাস্তা তৈরি করাকে কেন্দ্র করে নতুন বিরোধের সূচনা। চীন চায় সেখানে একটি রাস্তা তৈরি করতে। কিন্তু যে জায়গাটিতে চীন রাস্তা তৈরি করতে চাইছে সেটি ভুটান ও চীনের মধ্যকার একটি বিরোধপূর্ণ এলাকা। সে উপত্যকাকে চীন এবং ভুটান-উভয় দেশই দাবী করে। এক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান ভুটানের পক্ষে। এ রাস্তাটির মাধ্যমে চীন এমন একটি জায়গায় পৌঁছে যাবে যেটি ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে। চীন এমন জায়গায় সড়ক নির্মাণ করতে চাইছে যার পাশেই ভারতের ২০ কিলোমিটার চওড়া একটি করিডোর আছে। এ করিডোরের মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলো মূল ভারতের সাথে সংযোগ রক্ষা করে। উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে উভয় দেশ সীমান্তে তাদের সামরিক শক্তি বাড়িয়েছে এবং একটি মুখোমুখি অবস্থান তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে বিবিসির আরো খবর: যে কারণে চীন-ভারত দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে ‘ভারতের সীমানায় ঢুকে দেখুক চীন, বুঝবে কী হয়’ চীনকে ঠেকাতেই কি ভারতের দীর্ঘতম সেতু ভারত-শাসিত কাশ্মীরের ব্যাপারে চীনের হঠাৎ আগ্রহ কেন সিকিম সীমান্তে চীনের রাস্তা তৈরি নিয়ে প্রায় দুই মাস ধরে চীন ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। এমন প্রেক্ষাপটে আজ বেইজিং যাচ্ছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। +text: মাস্ক পরে নিজেকে নিরাপদ রাখার চেষ্টা করছেন সাধারণ মানুষ। আর এই সময়ের মধ্যে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৪ জন। এ নিয়ে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মোট মারা গেলেন ৩,৯৪১ জন। আর এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত হলেন মোট ২ লাখ ৯৪ হাজার ৫৯৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০,৮০১ টি নমুনা পরীক্ষা করে নতুন শনাক্তের এই সংখ্যা পাওয়া গেছে। পরীক্ষার অনুপাতে শনাক্তের হার ১৮.২৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ লাখ ৪২ হাজার ৬৫৬ টি। আর এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে শনাক্তের হার ২০.৪২ শতাংশ। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৩,৫২৪ জন। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৭৯ হাজার ০৯১ জন। নতুন করে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ২৪ জন এবং নারী ১০ জন। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় ৭৯ ভাগই পুরুষ। করোনাভাইরাস: সুস্থ হয়ে উঠতে কতদিন লাগে? নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে করোনাভাইরাস : কীভাবে বানাবেন আপনার নিজের ফেসমাস্ক আপনার কি দ্বিতীয়বার কোভিড ১৯ সংক্রমণ হতে পারে? টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? 'হার্ড ইমিউনিটি' কী, এর জন্য কতটা মূল্য দিতে হবে? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১,৯৭৩ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। +text: এই কুরআনটিই ১৬ কোটি রুপি দামে গোপনে বিক্রির চেষ্টা হচ্ছিলো এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে একজনকে। আনুমানিক ১৬ কোটি রুপির দামের এই কুরআনটি বাংলাদেশে পাচার করার চেষ্টা হচ্ছিল বলে জানিয়েছে রাজস্থান পুলিশ। তবে সেটি বাংলাদেশে কার কাছে পাচার করার চেষ্টা করা হচ্ছিল, তা জানতে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে জেরা ক��া হচ্ছে। সব মিলিয়ে ১,০১৪ পাতার ওই কুরআনটি গত বছর ডাকাতি করে ছিনিয়ে নেয় তিন ব্যক্তি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে দু'জনকে আগেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। আর বৃহস্পতিবার কুরআনসহ গ্রেফতার করা হয় তৃতীয় ব্যক্তিকে। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: 'কোরান পড়ে বুঝেছি, তিন তালাকে তা সম্মতি দেয় না' পুরনো কোরান রাখার জন্য দুই মাইল লম্বা এক সুড়ঙ্গ কক্সবাজারে কোরান শরীফের ভেতরে ইয়াবা পাচার সোনায় লেখা কুরআন জয়পুর উত্তরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার রাজীব পাচার বিবিসি বাংলার অমিতাভ ভট্টশালীকে জানান, গত বছর ভিলওয়ারা জেলার এক বাসিন্দা যোগেন্দ্র সিং মেহতা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন যে তার হেফাজতে থাকা একটি বহুমূল্য কুরআন কয়েকজন ব্যক্তি ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। "মি. মেহতার পূর্বপুরুষেরা সম্রাট আকবরের কাছ থেকে দান হিসাবে ঐতিহাসিক মণ্ডলগড় কেল্লা পেয়েছিলেন। সেখানেই সোনার অক্ষরে লেখা ওই কুরআন শরিফটি তিনি পান। বন্ধু ও আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে তিনি সেটি বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।" মি. পাচার আরও বলেন, "কুরআনটি কেনার নাম করে ফাঁকা জায়গায় ডেকে নিয়ে গিয়ে সেটি ছিনতাই করা হয়। ওই ঘটনার পরে দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু কোরান শরিফটি তখন পাওয়া যায়নি।" কয়েকদিন আগে সূত্র মারফত পুলিশ জানতে পারে যে একটি বহুমূল্য কুরআন কেউ বিক্রি করার চেষ্টা করছে। বিশেষ তদন্ত দল তৈরি করে পুলিশই ক্রেতা সেজে যোগাযোগ করে ভাঁওয়ারি মীনা নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে। বৃহস্পতিবার সে ওই কুরআনটি ক্রেতা রূপী পুলিশের কাছে বিক্রি করতে এলে হাতেনাতে তাকে ধরা হয়। মি. পাচার জানান, "জেরা করতেই ভাঁওয়ারী মীনা জানায় যে সেটি বাংলাদেশে ১৬ কোটি রুপিতে বিক্রি করার চেষ্টা করছিল সে। তবে সেদেশে কার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল, সেটা এখনও বলেনি।" এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আগেই গ্রেপ্তার হওয়া তার দুই সাথীকেও জেল থেকে নিয়ে এসে এক সঙ্গে বসিয়ে জেরা করা হবে। ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাজস্থানে উদ্ধার করা হয়েছে মুঘল সম্রাট আকবরের আমলের একটি কুরআন, যেটি সোনায় লেখা বলে জানা গেছে। +text: গরমে তরমুজ খাওয়া ভালো বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা ওইদিন রাজশাহীতে তাপমাত্রা ছিল ৪১.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় ১৯৯৫ সালে সর্বশেষ ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছিল তাপমাত্রা। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, এই তীব্র তাপমাত্রা চলতি সপ্তাহের শেষ পর্যন্ত চলবে। কিন্তু এই প্রচণ্ড গরমে দেখা যায় শিশু ও বৃদ্ধসহ নানা বয়সের মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। সতর্ক না হলে সাধারণ পানিশূন্যতা, বদহজম থেকে হিটস্ট্রোকের মতো সমস্যায়ও পড়তে পারেন যে কেউ। কিন্তু তীব্র গরমে সুস্থ থাকার কী উপায়? আরো পড়তে পারেন: গরমে সুস্থ থাকতে করণীয় সম্পর্কে জানতে বিবিসি বাংলা ঢাকার আহসানিয়া মিশন জেনারেল হাসপাতালের সাবেক চিকিৎসক ডা. মাসুমা নাওয়ার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক খালেদা এদিবের সঙ্গে কথা বলেছে। তাদের পরামর্শের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে এই প্রতিবেদন তাপ ব্যবস্থাপনা মানবশরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকে, কিন্তু তার জন্য সুদিং বা শীতল তাপমাত্রা হচ্ছে ২০ থেকে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। আর বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মানবশরীরের সহ্যসীমার মধ্যে থাকে। কিন্তু তাপমাত্রা এবং বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ এর চেয়ে বেশি হলে মানবশরীর সহ্য করতে পারে না। তখন নানারকম অস্বস্তি ও সমস্যা দেখা যায়। এমনকি তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে মানুষের হিটস্ট্রোক হবার আশংকা বেড়ে যায়। ফলে যখন গরম বাড়ে তখন তাপ ব্যবস্থাপনাই হবে প্রধান কাজ, অর্থাৎ কিভাবে গরম কম লাগবে সেটি দেখতে হবে। পানি এবং পানিজাতীয় খাবার খেতে হবে শরীরের পানিশূণ্যতা ঠেকাতে এ সময় প্রচুর পানি এবং পানিজাতীয় খাবার খেতে হবে। পানি, স্যালাইন, ফলের রস, সরবত, ডাব এ ধরণের পানীয় শরীরে আর্দ্রতা যোগায়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পানিশূন্যতার বিষয়টিকে খুবই গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ পানিশূন্যতার ফলে স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে। পানি ও পানি-জাতীয় খাবারের পাশাপাশি পানি রয়েছে এমন প্রচুর সবজি ও ফল খাওয়া উচিত। তরমুজ, আনারস, জাম্বুরা, আপেল এমন ফল শরীরের গরমের ভাব কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া প্রচুর সবজি খেলে পরিপাকক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়। তাতে শরীরের অস্বস্তি কমে। সূর্যের আলো থেকে দূরে থাকতে হবে দিনের যে সময়ে তাপমাত্রা বেশি থাকে সে সময় সরাসরি রোদে না যাওয়া বা অতিরিক্ত পরিশ্রম না করা। পানিজাতীয় পানীয় শরীরে আর্দ্রতা যোগায় বাংলাদেশে সাধারণত সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সূর্যের আলো সবচ���য়ে প্রখর থাকে। সূর্যের আলোতে যেতে হলে ছাতা, টুপি, পায়ে জুতা-স্যান্ডেল ব্যবহার করুন। চোখ নিরাপদ রাখতে সানগ্লাস ব্যবহার করুন। কোথাও যাওয়ার আগে সঙ্গে পানি অবশ্যই নেবেন। ভাজাপোড়া এবং জাঙ্ক ফুড বাদ তীব্র গরমে ভাজাপোড়া মুখরোচক খাবার, কিংবা জাঙ্ক ফুড শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। বার্গার, পটেটো চিপস বা পিৎজার মতো খাবারে প্রচুর ক্যালরি, সোডিয়াম ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। ফলে একদিকে যেমন গরম বেশি লাগে, তেমনি মুখে অরুচি এবং বদহজমের আশংকা তৈরি হয়। গরমে মুখরোচক ভাজাপোড়া খাবার কম খেতে হবে ফলে এ ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। সেই সঙ্গে ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। ঢিলেঢালা ও সুতি কাপড় বিশেষজ্ঞরা গরমে হালকা, ঢিলেঢালা ও হালকা রঙের সুতি কাপড় পরার পরামর্শ দেন। এ ধরণের কাপড়ে তাপ শোষণ হয় দ্রুত এবং বাতাস আসাযাওয়া করতে পারে, ফলে গরম কম লাগে। ঘর ঠাণ্ডা রাখা ঘর যাতে ঠাণ্ডা থাকে এবং ঘরে যাতে বাতাস প্রবেশ করতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। দিনের বেলায় ঘরে আলো কম থাকলে ঘর ঠাণ্ডা থাকে। ঘরের মধ্যে গাছ থাকলে তা তাপ শুষে নেয়। পাকা মেঝে হলে বারবার ঘর মুছে দিলে ঘর ঠাণ্ডা থাকে। যেসব অসুস্থতা হতে পারে প্রচণ্ড গরমে সাধারণত অতিরিক্ত ঘামের কারণে পানিশূন্য হয়ে পড়ে মানুষের শরীর। পানিশূন্যতার কারণে দ্রুত দুর্বল হয়ে যায় মানুষের শরীর। এছাড়া বদহজম ও পেট খারাপ এবং পানি-বাহিত নানা ধরণের রোগ বালাই হতে পারে এ সময়। রোটাভাইরাসসহ বিভিন্ন ভাইরাসজনিত পাতলা পায়খানা হতে পারে। মাথা ঘোরা এবং বমিভাব, কারো ক্ষেত্রে বমিও হতে পারে। এধরণের অসুস্থতা সাধারণত একটু সতর্ক হলে এড়িয়ে চলা সম্ভব। কিন্তু অতিরিক্ত গরমে যদি কারো শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, দুর্বলতা, মাথা ঝিমঝিম-ভাব হয় কিংবা মাথা ঘুরে পড়ে যায়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: বাংলাদেশে সপ্তাহ খানেক ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলছে তীব্র দাবদাহ। এর মধ্যে আবহাওয়া অধিদফতরের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যে বলা হয়েছে, ২৬শে এপ্রিল ঢাকায় গত ২৬ বছরের রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়েছে। +text: নিজেদের কোন লিঙ্গের বলে পরিচয় দেবেন সেটা নিজেরাই নির্ধারণ করতে চান ট্রান্সজেন্ডার বা রূপান্তরকামীরা। গত সপ্তাহে পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ লোকসভায় বিলটি পাশ হয়েছে আর তারপরেই সারা দেশে রূপান্তরকামীরা বলতে শুরু করেছেন যে ওই বিলে আসলে তাদের অধিকার রক্ষার বদলে অধিকার খর্ব করার ব্যবস্থা করেছে সরকার। তারা বলছেন, নিজেদের লিঙ্গ কী, সেটা তারা নিজেরাই ঘোষণা করার অধিকারী, কিন্তু আইনে সেই অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। এছাড়াও হিজড়াদের ভিক্ষা করে জীবনধারণকেও বেআইনী বলে ঘোষণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে বিলে রূপান্তরকামীদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, চাকরী - এসব বিষয়ে কোনও দিশা দেয়া হয়নি। ২০১৪ সালে সুপ্রীম কোর্ট রূপান্তরকামীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যে রায় দিয়েছিল, নতুন বিলটি তার অনেকটাই বিপরীত বলে মনে করছেন রূপান্তরকামীরা। সেই দিক থেকে আদালতের অবমাননাই করা হয়েছে এই বিলে। রূপান্তরী নারী ও অ্যাক্টিভিস্ট রঞ্জিতা সিনহার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, তারা কোন কোন প্রশ্নে বিলটির ব্যাপারে ক্ষুব্ধ। আরও পড়তে পারেন: পাবনায় কথিত সমকামী বিয়ে, এলাকায় আলোড়ন সমকামী যৌনতা কি অপরাধ? বিবেচনা করবে আদালত সমকামীদের নিয়ে মন্তব্য করে বিপাকে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী পুরুষ সমকামিতার বর্ণনা দেওয়ায় লেখকের জেল "আমাদের পরিচয় কীভাবে নির্ধারিত হবে, সেটা এই বিলে যেভাবে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, তা নিয়েই মূল বিরোধ। যেখানে সুপ্রীম কোর্টের রায় দিয়েছিল, যে কেউ নিজেকে নারী অথবা পুরুষ হিসাবে পরিচয় দেওয়ার অধিকারী, এই বিলে তো উল্টো কথা বলা হল। একটা স্ক্রিনিং কমিটির কাছে হাজির হয়ে লিঙ্গ নির্ধারণ করতে হবে। এর থেকে পিছিয়ে পড়া মানসিকতার দৃষ্টান্ত বোধহয় আর হয় না। এই সরকার সেটাই করতে চলেছে এই বিলের মাধ্যমে," বলছিলেন রঞ্জিতা সিনহা। এই বিলে লেখা হয়েছে, যেসব রূপান্তরকামী অপারেশন করিয়ে একটি নারী অথবা পুরুষে পরিণত হয়েছেন, তারা ছাড়া অন্য যে কেউই ট্র্যান্সজেন্ডার পরিচয় পেতে গেলে জেলা স্তরের স্ক্রিনিং কমিটির সামনে হাজির হতে হবে। ওই কমিটিতে ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়াও চিকিৎসক, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এঁরা ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ও একজন ট্র্যান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি থাকবেন। এই আইন তাদের লিঙ্গ পরিচয় ঠিক করার অধিকার কেড়ে নিচ্ছে বলে মনে করেন ট্র্যান্সজেন্ডার বা রূপান্তরকামীরা। তামিলনাডুর একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে রূপান্তরীদের সংগঠনগুলি বলছে ওই স্ক্রিনিং কমিট���র সদস্যরা রীতিমতো গায়ে হাত দিয়ে বোঝার চেষ্টা করেছিলেন যে একজন সত্যিই রূপান্তরী কী না! রূপান্তরকামীদের সংগঠন আনন্দমের সচিব সিন্টু বাগুই, যিনি পুরুষ থেকে নারী হয়ে উঠেছেন, তিনি বলছিলেন, "সেক্স রিঅ্যাসাইনমেন্ট সার্জারীর যে কথা বলা হচ্ছে, সেটা তো তৃণমূল স্তরে থাকা আমাদের সম্প্রদায়ের মানুষরা করতেই পারবেন না এত খরচ সাপেক্ষ। তবে তার থেকেও বড় কথা আমি অপারেশন করাবো কী না, অথবা আমি নারী না পুরুষ, সেটা তো আমিই ঠিক করব! অন্য কেউ কীভাবে সেটা নির্ধারণ করবে!" এই বিলের আরেকটি যে বিরোধীতার জায়গা তৈরী হয়েছে, সেখানে রূপান্তরকামীদেরই সম্প্রদায়ভুক্ত হিজড়াদের ভিক্ষা করাকে বেআইনী বলে ঘোষণা করা হতে চলেছে। চিরাচরিতভাবে রাস্তায় বা বাড়িতে ঘুরেই ভিক্ষা করে থাকেন হিজড়ারা। কিন্তু সদ্য পাশ হওয়া বিলটিতে হিজাড়ারা ভিক্ষা করতে গিয়ে ধরা পরলে ছ মাস থেকে দুবছরের জন্য জেলও হতে পারে। ভারতের হিজড়ারা নিজেদের নারী পরিচয় দিতেই স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। সিন্টু বাগুই বলছিলেন ভিক্ষা করাকে বেআইনী যখন বলা হল, অন্যদিকে তাদের উন্নতির জন্য কোনও ব্যবস্থাই রাখা হল না বিলটিতে। "বিলে না আছে চাকরীর বিষয়, না রয়েছে স্বাস্থ্য সম্বন্ধীয় কোনও কথা, বা পড়াশোনার বিষয়। একজন পিছিয়ে পড়া ট্র্যান্স সম্প্রদায়ের সদস্য যদি স্কুল বা কলেজছুট হয়ে যায়, তার ভবিষ্যত কী হবে, এসব কোনও কিছুই বলা হয় নি বিলে," জানাচ্ছিলেন সিন্টু বাগুই। সারা দেশেই সদ্য পাশ হওয়া বিলটির বিরুদ্ধে ক্ষোভ বিক্ষোভ চলছে। কোথাও রূপান্তরী নারী-পুরুষরা ধর্নায় বসেছেন, কোথাও সাধারণ মানুষদের মধ্যে নিজেদের সম্প্রদায়ের ব্যাপারে সচেনতা গড়তে চলছে প্রচার, কোথাও আবার সংবাদ সম্মেলন করা হচ্ছে। গত কয়েকদিনে কলকাতাতেও এরকম কয়েকটি সংবাদ সম্মেলন করেছে রূপান্তরকামীদের নানা সংগঠন, রবিবার তারা শহরে একটি মিছিলও করবে। ভারতের ট্র্যান্সজেন্ডার বা রূপান্তরকামীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সদ্য পাশ হওয়া একটি বিল নিয়ে ওই সম্প্রদায়ের মধ্যেই ক্ষোভ তৈরী হয়েছে। +text: করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতে অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় ভিড় করছেন। তারা আশংকা করছেন, সম্ভাব্য রোগীদের নাক এবং মুখ থেকে ঠিকমতো নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে না। এই নমুনা ঠিকমতো সংগ্রহ না করা হলে কোন ব্যক্তির মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ থাকলেও সেটি শ��াক্ত করা সম্ভব হবে না। সঠিক পদ্ধতিতে পরীক্ষা না হলে সংক্রমণের বিস্তার ঠেকানো রীতিমতো অসম্ভব বিষয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। গত প্রায় দুই সপ্তাহ যাবত দেখা যাচ্ছে, প্রতিদিন যতগুলো নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে তার মধ্যে ২০ থেকে ২২ শতাংশ মানুষের মধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যাচ্ছে। তবে এটি প্রকৃত চিত্র নয় বলে মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞ। কারণ, টেস্ট ঠিকমতো হচ্ছে কি না সেটি নিয়ে অনেকের সন্দেহ আছে। ল্যাবরেটরিতে যথার্থ ফলাফল পেতে বেশ কিছু পূর্বশর্ত পালন করতে হয়। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বেনজির আহমেদ বলেন, নাক এবং মুখ থেকে সঠিক পদ্ধতিতে নমুনা সংগ্রহ করা জরুরি। সবক্ষেত্রে সেটি ঠিকমতো হচ্ছে কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে মি: আহমেদের। তার মতে নির্ভুল ফলাফল পেতে নিচের পাঁচটি বিষয় নিশ্চিত করা জরুরি। ১. কার নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে ২. কিভাবে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে ৩. স্যাম্পল ঠিকমতো সংরক্ষণ করা ৪. স্যাম্পল ঠিকমতো টেস্ট করা ৫. সঠিক রিপোর্ট তৈরি করা মি: আহমেদ বলেন, "ভাইরাসটা কখনো থ্রোটে থাকবে, কখনো নস্ট্রিল-এ থাকবে। কখনো দুটোতেই থাকবে। এজন্য দুটো জায়গা থেকেই নমুনা নিতে হবে। আমাদের ন্যাজাল যে ক্যানেলটা আছে, এই ক্যানেলের ওয়াল থেকে সোয়াব নিলে এটা ঘুরিয়ে-ঘুরিয়ে নিতে হবে। আমি যদি শুধু নাকে ঢুকোই আর বের করি এবং ওয়ালটাকে যদি টাচ না করি, সেখানে কিছু আসবে না। কারণ ভাইরাসটা তো থাকে ওয়ালে।" সঠিকভাবে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে কি না সেটি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের অনেকেই সন্দিহান। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম দিকে শুধু ঢাকায় অবস্থিত আইইডিসিআর-এ পরীক্ষা করা হতো। কিন্তু এখন দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৫০ টি ল্যাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে। এসব ল্যাবের সাথে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণে জড়িত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য এবং ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। তিনিও মনে করেন, দ্রুততার সাথে কাজ করতে গিয়ে প্রশিক্ষণের ঘাটতি রয়ে গেছে। অধ্যাপক আহমেদ বলেন, "আমরা কন্টিনিউয়াস ট্রেনিং দিচ্ছি। ট্রেনিং এতো কুইকলি করতে হয়েছে যে অনলাইন ট্রেনিং ছাড়া অন্য কোন উপায়ে ট্রেনিং দেয়া সম্ভব ছিল না। " বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য সঠিক টেস্ট এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে ফলাফল পাওয়াটা বেশ জরুরি। সেটি না হলে আক���রান্ত ব্যক্তিদের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়াতেই থাকবে। কিন্তু অনেকে অভিযোগ করছেন, অনেক ক্ষেত্রে নমুনা দেবার পরে রিপোর্ট পাবার জন্য চার থেকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। 'প্লাজমা থেরাপি' নিয়ে বাংলাদেশে কী হচ্ছে, 'প্রটোকল' কী বলছে মাস্ক পরে কি ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানো যায়? করোনাভাইরাস : কীভাবে বানাবেন আপনার নিজের ফেসমাস্ক করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন মৃত ব্যক্তির দেহে কতক্ষণ সক্রিয় থাকে ভাইরাস বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে যেভাবে টেস্ট করা হচ্ছে তাতে প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠছে কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা। +text: নুসরাত জাহান রাফি আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই রায় ঘোষণা করে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। মামলার সাত মাসেরও কম সময়ের মধ্যে, ৬১ কার্যদিবস শুনানির পর এ রায় ঘোষণা করা হল। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের রায় ঘোষণাকে ঘিরে সোনাগাজী ও ফেনী সদর উপজেলায় কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। ফেনীর জেলা জজ আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৬জন আসামী: আসামীদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ: ফেনী থেকে বিবিসির সংবাদদাতা আকবর হোসেন জানাচ্ছেন, সকাল ১০ টা ৫৭ মিনিটে মামলার সবকজন আসামীকে ফেনী নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় হাজির করা হয়। এদের মধ্যে মামলার অন্যতম আসামী কামরুন নাহার মনিও ছিলেন, যিনি নুসরাত হত্যার সময় গর্ভবতী ছিলেন এবং পরে কারাগারে সন্তান প্রসব করেন। তিনি কাঠগড়ায় আসেন তার শিশু সন্তানকে কোলে নিয়েই। ১১টা ৫মিনিটে বিচারক মামুনুর রশীদ এজলাসে এলে রায় ঘোষণার কার্যক্রম শুরু করেন। তিনি আসামীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করেন এবং বলেন, "মিডিয়ার কারণেই বিশ্ব জানতে পেরেছে যে নুসরাত নামের একটি লড়াকু মেয়ে কীভাবে নিজের সম্ভ্রমের জন্য লড়াই করেছে"। "আসামীরা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছে" বলেও উল্লেখ করেন বিচারক। নুসরাত হত্যার ঘটনায় দ্রুত বিচারের দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধন হয়েছিল। যে কারণে ও যেভাবে হত্যা করা হয় নুসরাতকে: সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে নুসরাত জাহান রাফি শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনলে তার মা শিরিনা আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭শে মার্চ সোনাগাজী থানায় যৌন হয়রানির মামলা করেন। সেই মামলায় অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তা�� করে পুলিশ। তারপর থেকে মামলা তুলে নিতে নুসরাত এবং তার পরিবারের ওপর নানাভাবে চাপ আসতে থাকে। ৬ই এপ্রিল নুসরাত, মাদ্রাসা কেন্দ্রে আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে তাকে কৌশলে মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। পরদিন নুসরাত ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসকদের কাছে দেয়া জবানবন্দিতে অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। ১০ই এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত। নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ই এপ্রিল সোনাগাজী থানায় মামলা করলেও পরে সেটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। আলোচিত এই হত্যা মামলাকে ঘিরে আদালত প্রাঙ্গণে ছিল নিরাপত্তার কড়াকড়ি। নুসরাত হত্যার মামলটি প্রথমে সোনাগাজী থানার পরিদর্শক কামাল হোসেন তদন্ত করলেও; ওই থানার ওসিসহ পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নুসরাত হত্যাকাণ্ডের সময় গাফিলতির অভিযোগ ওঠায় তদন্তভার নেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গত ২৯শে মে পিবিআই ৩৩ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষে মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ ১৬ জনকে আসামী করে মামলার ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট আদালতে দাখিল করে। পরদিন ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট আদালতে থেকে মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। ১০ই জুন অভিযোগপত্র আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল, মামলায় গ্রেফতার ২১জন আসামীর মধ্যে পাঁচজনকে অব্যাহতি দেয়া হয়।। তার পরের মাসে ২০শে জুন অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ১৬জন আসামির বিচারকাজ। আসামীদের মধ্যে ১২জন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। ৯ই সেপ্টেম্বর ৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮৭ জনের সাক্ষ্য নেয়া শেষ হয়। এরপর গত ৩০ সেপ্টেম্বর রায়ের দিন ঠিক করে আদালত। বাংলাদেশের ফেনী জেলার সোনাগাজীতে আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলায় ১৬জন আসামীর সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। আসামীদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে জানায় আদালত। +text: অভিযোগ আসতে শুরু করেছে ভারতের বিভিন্ন সম্পাদকের বিরুদ্ধে গত দু-তিনদিনের মধ্যে ভারতে একের পর এক নারী সাংবাদিক তাদের সাবেক সম্পাদক, ব্যুরো চিফ বা উর্ধ্বতন বসের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার অজস্র অভিযোগ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সামনে আনতে শুরু করেছেন। কয়েকটি ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন, কোথাও আবার সংশ্লিষ্ট সংবাদ প্রতিষ্ঠান অভিযোগের যথাযথ তদন্ত হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তবে তারপরেও প্রভাবশালী এই সব অভিযুক্তদের আদৌ শাস্তির আওতায় আনা যাবে কি না, পর্যবেক্ষকরা তা নিয়ে সন্দিহান। বলিউডে অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্তর তোলা যৌন লাঞ্ছনার অভিযোগ নিয়ে সারা ভারত যখন তোলপাড়, তখনই দিনতিনেক আগে হায়দ্রাবাদে টাইমস অব ইন্ডিয়ার বর্তমান রেসিডেন্ট এডিটরের বিরুদ্ধে দশ বছর আগে ঘটা একটি যৌন লাঞ্ছনার অভিযোগ তোলেন সাংবাদিক সন্ধ্যা মেনন। সোশ্যাল মিডিয়াতে অভিযোগগুলো সংকলনের কাজ করছেন সাংবাদিক অ্যাক্টিভিস্ট ঋতুপর্ণা চ্যাটার্জি সেই শুরু, তারপর একে একে মুম্বাইতে ডিএনএ-র সাবেক প্রধান সম্পাদক গৌতম অধিকারী, হিন্দুস্তান টাইমসের অন্যতম সম্পাদক প্রশান্ত ঝা-সহ বহু সিনিয়র সাংবাদিকের বিরুদ্ধে একের পর অভিযোগ আসতে শুরু করে ফেসবুক ও টুইটারে। ভারতে রিপোটার্স উইদাউট বর্ডার্সের প্রতিনিধি, সাংবাদিক ঋতুপর্ণা চ্যাটার্জি বলছিলেন, "এই প্রক্রিয়াটা শুরু হয়েছে কিন্তু বেশ কিছুদিন আগেই। এক বছর আগে একটিভিস্ট রায়া সরকার একটা তালিকা প্রকাশ করেছিলেন ভারতের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যারা সেক্সুয়াল প্রিডেটর, তাদের নামের। এখন ঠিক সেই জিনিসটাই হচ্ছে মিডিয়ার জগতে।" "আসলে আমরা সবাই জানি এই জিনিসগুলো বহুদিন ধরে ঘটে চলেছে - কিন্তু জাস্টিস সিস্টেম দিয়ে এর কোনও প্রতিকার হয় না, ভিক্টিমরা কখনওই এই সব নিগ্রহের কোনও সুবিচার পান না। কেসগুলো ধামাচাপা পড়ে যায়, প্রকাশ্যে এ নিয়ে কখনও আলোচনা হয় না - এবং সবচেয়ে বড় কথা আক্রান্তদের কাছে ন্যায় বিচার অধরাই থেকে যায়!" তবে ভারতে মিডিয়া হাউসগুলো এতটাই শক্তিশালী যে তার বড় বড় নামগুলো এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন ভারতে বিবিসির উইমেন্স ও সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্স এডিটর গীতা পান্ডে। তার কথায়, "দুএকটা মাঝারি মাপের নাম ছাড়া সত্যিকারের বড় নামগুলো কিন্তু খুব একটা এখনও আসেনি - মানে ভারতীয় সাংবাদিকতার যারা হার্ভি ওয়াইনস্টাইন, তাদের এখনও আমরা পাইনি।" অভিযোগ ওঠার পর হিন্দুস্তান টাইমসের রাজনৈতিক সম্পাদকের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন প্রশান্ত ঝা "এরা অসম্ভব ক্ষমতাশালী, অনেক কিছু করতে পারেন। কিন্তু বহুদিন ধরে নানা নিউজরুমে আমরা যে জল্পনাগুলো শুনেছি, সেই নামগুলো কোথায়?" সাংবাদিক-অ্যাক্টিভিস্ট ঋতুপর্ণা চ্যাটার্জি এই অভিযোগগুলো সংকলন করে সোশ্যাল মিডিয়াতে গুছিয়ে পোস্ট করছেন। তিনি কিন্তু বিশ্বাস করেন, অচিরেই আরও নাম আসবে - এবং সাংবাদিকতার রাঘব বোয়ালরাও হয়তো বাদ যাবেন না। "এখন কিন্তু শত শত মেয়েরা এগিয়ে আসছেন। আমাকে রোজ প্রচুর মেয়ে ডিএম বা প্রাইভেট মেসেজ করে বলছেন, আমারও কিন্তু একটা 'স্টোরি' আছে। প্লিজ একটু শুনবেন? আমরা ধৈর্য ধরে সেই সব গল্পই শুনছি, তারপর সব দিকে আঁটঘাট বেঁধে সেগুলো অভিযোগের আকারে প্রকাশ করছি।" "আসলে কি জানেন, মিডিয়াই বলুন বা হলিউড-বলিউড-বিজ্ঞাপন কিংবা কমেডির দুনিয়া - মেয়েদের চিরকালই একটা 'হুইসপার নেটওয়ার্ক' থাকে। যেখানে তারা পরস্পরকে চিরকাল সতর্ক করে এসেছে অমুক লোকটা কিন্তু সুবিধার নয়, অমুকের সঙ্গে আমার অভিজ্ঞতা খুব খারাপ।" "কিন্তু এখন সেই ওয়ার্নিং নেটওয়ার্কের বাইরে বেরিয়ে এসে তারা রীতিমতো অভিযোগ পেশ করছে, তাও সেটা অভিযুক্তের নাম করে। আমি সেগুলোই লিপিবদ্ধ করছি। আর এই যে একসঙ্গে এত মেয়ে সাহসে ভর করে মুখ খুলছে, সেটা অবশ্যই একটা সাঙ্ঘাতিক ব্যাপার!", বলছিলেন ঋতুপর্ণা চ্যাটার্জি। বলিউডেও যৌন নিগ্রহের অভিযোগের মুখে পড়েছেন অভিনেতা নানা পাটেকর কিন্তু এই সব অভিযোগ কি শেষ পর্যন্ত আইনের কাঠগড়ায় পৌঁছাতে পারবে? গীতা পান্ডে এখনও খুব একটা আশাবাদী নন। তিনি জানাচ্ছেন, "গত কয়েকদিনে কিন্তু আমরা এটাও দেখেছি অভিযুক্তরা যখন ভয় দেখাচ্ছেন বা আইনি পদক্ষেপের হুমকি দিচ্ছেন, বহু টুইট মুছেও ফেলা হয়েছে।" "যে সব অভিযোগের ক্ষেত্রে সাক্ষী আছে, স্ক্রিনশট বা অন্য প্রমাণ আছে সেগুলো অন্য কথা - কিন্তু যেখানে বিষয়টা শুধু আমার বক্তব্য বনাম তোমার বক্তব্য, সেখানে আমি নিশ্চিত নই কতটা কী করা যাবে। ভারত আমেরিকা নয়, এখানকার পিতৃতান্ত্রিক সমাজে আদৌ কি এই অভিযুক্তদের কোনও সাজা হবে?" তবে আইন-আদালত হয়তো পরের পদক্ষেপ - তার আগে ভারতের একের পর এক মহিলা সাংবাদিক এখন তাদের নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছেন। আর প্রায় সব ক্ষেত্রেই সেটা নিজের ও অভিযুক্তর নামধাম প্রকাশ করে, যে জিনিস ভারতে আগে কখনও দেখা যায়নি। যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে '#মি টু' ক্যাম্পেনের রেশ এবার বলিউডের পর আছড়ে পড়েছে ভারতের মিডি���়া দুনিয়াতেও। +text: বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি করা হলেও এটি কোনো আনুষ্ঠানিক সতর্কতা বা নিষেধাজ্ঞা নয় তবে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে এই সতর্কতা কোনো আনুষ্ঠানিক সতর্কতা বা নিষেধাজ্ঞা নয় বলে জানান আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা। "করোনাভাইরাস যেহেতু বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে, তাই খুব প্রয়োজন না হলে বিদেশ ভ্রমণ করাকে নিরুৎসাহিত করছি আমরা, তবে নিষেধ করছি না", বলেন আইইডিসিআরের পরিচালক। দেশের বাইরে ভ্রমণ করে ফেরত আসা কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের মাধ্যমে যেন ভাইরাস দেশে প্রবেশ করেতে না পারে, সেজন্য সতর্কতামূলক এই পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে জানান সাবরিনা ফ্লোরা। "কিছু কিছু দেশে এই ভাইরাসের উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সেক্ষেত্রে সেরকম কোনো জায়গায় গিয়ে বাংলাদেশের কোনো নাগরিক যদি সংক্রমিত হন, তাহলে বাংলাদেশে ভাইরাস প্রবেশ করা ঠেকানো আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।" বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া যারা ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বিদেশ যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, আপাতত ভ্রমণ না করতে নিরুৎসাহিত করছে আইইডিসিআর। "অনেকের ক্ষেত্রে বিশেষ প্রয়োজনে বিদেশ ভ্রমণ করতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে তারা যেন বিদেশ গিয়ে ভ্রমণকালীন সতর্কতামূলক পরামর্শগুলো মেনে চলেন, তার অনুরোধ করছি আমরা।" ভ্রমণকালীন সতর্কতা হিসেবে জনসমাগমে যাওয়া থেকে বিরত থাকা, বাজারে কম যাওয়া, শ্বাসনালীর সংক্রমণ রয়েছে এমন ব্যক্তির এক মিটারের মধ্যে না যাওয়া, করমর্দন না করা এবং কোলাকুলি না করার উল্লেখ করেন তিনি। যেসব দেশে ভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে, শুধু সেসব দেশেই নয়, অন্যান্য দেশগুলোতে ভ্রবমণের ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে আইইডিসিআর। "যেহেতু অনেক দেশ এখনো জানেই না যে সংক্রমণ কোথা থেকে শুরু হয়েছে, তাই সব দেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রেই আমরা এই পরামর্শটা দিয়েছি।" আইইডিসিআর মনে করছে, কেবল বিদেশফেরত ব্যক্তিদের মাধ্যমেই বাংলাদেশে কোভিড-১৯ ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে। যে কারণে ভ্রমণের ক্ষেত্রে পরামর্শ দেয়া হয়েছে সতর্ক থাকার। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশে প্রবেশের সব বন্দর দিয়ে প্রবেশ করা ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। চীনের উহান শহরের - যেখান থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে - তিনশো'র বেশ��� বাংলাদেশি নাগরিককে বিশেষ বিমানে দেশে আনা হয়। তাদের সবাইকে ১৪দিন উত্তরার আশকোনায় কোয়ারেন্টিনে রাখার পর ১৫ই ফেব্রুয়ারি ছেড়ে দেয়াা হয়। বিশেষ সতর্কতা হিসেবে ছাড়পত্র পাওয়া সবার সাথে পরের অন্তত দশদিন নিয়মিত যোগাযোগ রাখার সিদ্ধান্ত জানায় আইইডিসিআর। পাশাপাশি এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে আসা যেসব বিদেশি নাগরিকের মধ্যে কোভিড-১৯'এর উপসর্গ পাওয়া গেছে, তাদের সাথেও নিয়মিত ভিত্তিতে যোগাযোগ রাখছে আইইডিসিআর। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব চীন বাদে আরো বেশকিছু দেশে ছড়িয়ে পড়ায় বাংলাদেশ থেকে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে 'সতর্ক থাকার পরামর্শ' দিয়েছে বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, আইইডিসিআর। +text: আমস্টার্ডামের অতিরিক্ত ওজনের শিশুদের এখন নিয়মিত ব্যায়ামাগারে যেতে হয় শহরের একটি শরীর চর্চা কেন্দ্রে , টেরেল ভ্যান ডে নামের একজন স্কুল ছাত্র ওঠা-বসার ব্যায়াম করছে। এরপর সে খানিকক্ষণ লাফালো আর দৌড়ালো। তার শ্বাস ঘন হয় এসেছে আর হৃপিন্ড জোরে জোরে চলছে। কিন্তু নয় বছরের শিশুটি হাসছে, কারণ কষ্ট হলেও সে আনন্দ পাচ্ছে। শিশুদের স্বাস্থ্যের উন্নতির যে কর্মসূচী নিয়েছে আমস্টার্ডাম, সেই কর্মসূচীতে অংশ নেয়া শিশুদের সে একজন। শহরের স্বাস্থ্য-ওজন কর্মসূচী অনুযায়ী, শহরে এখন স্থূল শিশুদের অতিরিক্ত ওজন ১২ শতাংশ কমেছে। একবছর আগে টেরেলের বাবা-মাকে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায় যে, তার ওজন অতিরিক্ত বেশি। এরপরই তাকে এই কর্মসূচীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আরও পড়ুন: মাশরাফির অবসর ভাবনা: ক্রিকেট নাকি রাজনীতি? কেন বদলে দেওয়া হলো জেলার ইংরেজি বানান শুধু খাবার নয়, শিশুদের জীবনযাত্রার আর শারিরিক চর্চার দিকেও নজর রাখছে শহর কর্তৃপক্ষ আমস্টার্ডামের সব শিশুর ওজন এখন নিয়মিতভাবে নজরদারি করা হচ্ছে। তাদের বয়স ও উচ্চতার সাথে মিলিয়ে দেখা হয় যে ওজন ঠিক আছে কিনা। কারো অতিরিক্ত ওজন পাওয়া গেলে তা কমানোর ব্যবস্থা করা হয়। যেমন টেরেলকে ক্রিস্টাল ডে লিজেস্টার নামের একজন শিশু স্বাস্থ্য সেবিকার কাছে পাঠানো হয়। তিনি টেরেলের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ প্যাকেজ তৈরি করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে তার খাদ্য তালিকা, ব্যায়ামের সময়সূচী আর একজন স্বেচ্ছাসেবীকে নির্ধারণ করে দেয়া, যে তার বাড়িতে গিয়ে নিয়মিত নজরদারি করবে। এ সব কিছুই করা হয় একেবারে বিনামূল্যে। শুধু খাবার নয়, শিশুদের জীবনযাত্রার আর শারিরিক চর্চার দিকেও নজর রাখছে শহর কর্তৃপক্ষ। মিজ ক্রিস্টাল বলছেন, ''সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে প্রচলিত পদ্ধতিতে কথা না বলা, কারণ সবাই জানে চিনি বা ফাস্টফুড খাওয়া ক্ষতিকর। সুতরাং যখন কোন শিশুর অতিরিক্ত ওজন হয়, তখন তাকে এবং তার অভিভাবকদের বোঝানো দরকার আসলে সমস্যাটা কোথায় হচ্ছে?'' যেমন টেরেলের ক্ষেত্রে তার বাবা-মা বুঝতে পারে, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া আর স্কুল থেকে ফিরে অতিরিক্ত সময় ধরে কম্পিউটারে গেম খেলা তার মুটিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। টেরেলে মা বলছেন, ''শহর কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ যে, তারা এরকম উদ্যোগ নিয়েছে। এটা আসলে খুবই ভালো কাজ করছে।'' শিশুদের সাইকেল চালানো আর নানা খেলাধূলায় অংশ নিতেও উৎসাহিত করা হচ্ছে। তবে আমস্টার্ডামের স্থূলতার সবচেয়ে বেশি শিকার শহরের দরিদ্র অভিবাসী পরিবারগুলোর শিশুরা, যারা সুরিনাম, উত্তর আফ্রিকা বা তুরস্ক থেকে এসেছে। এখন এই এলাকাগুলোতেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে শহর কর্তৃপক্ষ। শহরের খাবারের দোকানগুলোকে সতেজ খাবার বিক্রিতে উৎসাহিত করা হচ্ছে এর মধ্যেই এই এলাকার শিশুদের মধ্যে স্থূলতার হার কমতে শুরু করেছে। গত কয়েক বছরে এই হার অন্তত ১২ শতাংশ কমেছে। যেমন উত্তর আমস্টার্ডামের অনেক অভিবাসী পরিবারের মেন্যুতে সবজি আর মুরগি দিয়ে তৈরি স্যুপ যোগ হয়েছে। খাবারদাবার আর রান্নার প্রক্রিয়া নিয়ে তারা নিয়মিত পুষ্টিবিদ দের পরামর্শ নিচ্ছেন। বাজেটের স্বল্পতা থাকায় এই কর্মসূচীর আওতায় যোগ করা হয়েছে স্থানীয় সংগঠক, শিক্ষক, সেবিকা, সমাজকর্মীদের। যারা স্থূলতার বিষয়ে সবাইকে সচেতন করছেন। এর আওতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের ফলমূল, কাবার আর স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া শেখানো হচ্ছে, পাশাপাশি ব্যায়াম তো রয়েছেই। পাশাপাশি সাবওয়ে আর খেলাধুলার স্থানগুলোয় অস্বাস্থ্যকর খাবারের বিজ্ঞাপন প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দোকান আর সুপারমার্কেটগুলোতেও স্বাস্থ্যকর সতেজ খাবার খেতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ডের সুফল এর মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষের আশা, তাদের এই কর্মসূচী শহরের বাসিন্দাদের দীর্ঘ জীবন আর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করবে। সারা বিশ্বেই শিশুদের মধ্যে স্থূলতা বাড়ছে। কিন্তু ইউরোপের নেদারল্যান্ডসের আমস্টার্ডা���ের এই প্রবণতা কমছে। +text: ঢাকার রাস্তায় যানবাহন অনেটাই বিশৃঙ্খল অবস্থায় থাকে। (ফাইল ছবি) কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসার সম্ভাবনা খুব একটা নেই। বাসগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং চালকের বেপরোয়া মনোভাবে কারণে ঢাকা শহরে সড়ক দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ বলে চিহ্নিত করেছেন সড়ক পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। চালকদের বেপরোয়া মনোভাবের জন্য অনেকাংশে মালিকরাই দায়ী। এমনটাই মনে করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউটের পরিচালক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। কারণ মালিকরা প্রতিদিন বাসটি চুক্তিতে চালকদের হাতে ছেড়ে দেয়। ফলে চালকদের মাথায় সবসময় চুক্তির বাইরে আরো বেশি টাকা আয় করার চিন্তা থাকে। আরো পড়ুন: বিআরটিএ চিত্র: আন্দোলনের পর বিবিসির চোখে কতটা বিপজ্জনক সড়কে চলাচল করছেন আপনি? ঢাকা শহর যেহেতু অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে সেজন্য এখানকার রাস্তার নেটওয়ার্কও পরিকল্পিত নয়। ঢাকা শহরে উত্তর-দক্ষিণ মুখী সড়ক বেশি থাকলে পূর্ব-পশ্চিমমুখী সড়ক কম। ড. রহমান বলেন, "সড়ক নেটওয়ার্ক ভালো না থাকায় ট্রাফিক সিগন্যালও কার্যকরী হয়না। পৃথিবীর অনেক দেশেই একই রাস্তায় বিভিন্ন আকারের যানবাহন চলেনা। কিন্তু ঢাকা শহরের রাস্তায় ছোট-বড় নানা ধরনের যানবাহন একসাথে চলাচল করে। এ কারণে ঢাকা শহরে লেন মেনে গাড়ি চালানো সম্ভব হয়না।" পরিবহন ব্যবস্থাকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে চাইরে কিছু নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করেন অধ্যাপক রহমান। ঢাকা শহরে ২৭৯টি বাস রুট রয়েছে, একথা উল্লেখ করে অধ্যাপক রহমান বলেন, ঢাকার মতো ছোট একটি শহরে এতো বাস রুট থাকার প্রয়োজন নেই। পুরো শহরকে বাস চলাচলের জন্য চার থেকে পাঁচটি রুটে ভাগ করে প্রতিটি রুটের জন্য একটি করে বাস কোম্পানি গঠন করা যেতে পারে বলে মনে করেন অধ্যাপক রহমান। তিনি বলেন, "বর্তমানে যারা মালিক আছেন, তারাই এসব কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার হবেন। এরপর আনুপাতিক হারে মালিকদের মধ্যে মুনাফা বণ্টন করা যেতে পারে। বাস চালকদের জন্য মাসিক নির্দিষ্ট আয়ের ব্যবস্থা থাকবে। তখন চালকের মধ্যে বেপরোয়া ভাব আসবে না। তখন সড়কের শৃঙ্খলা কিছুটা সম্ভব হবে," ভারতের মুম্বাই শহরের উদাহরণ দিয়ে এ বিশেষজ্ঞ বলেন, মুম্বাই শহরের জনসংখ্যার ঘনত্ব ঢাকার মতোই। কিন্তু সেখানে মাত্র ৩৬০০ বাস প্রতিদিন ৪৮ লক্ষ যাত্রী পরিবহন করে। অন্যদিকে ঢাকায় রয়েছে ছয় হাজার বাস। এগুলো প্রতিদিন ৩০ লক্ষ যাত্রী পরিবহন করছে। অর্থাৎ গড়ে প্রতিটি বাস ৫০০ যাত্রী পরিবহন করছে। কোম্পানি গঠনের পদ্ধতি অনুসরণ করলে ছয় হাজার বাস দিয়ে আরো বেশি যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে এবং তখন সড়কে কিছু শৃঙ্খলা ফিরে আসবে বলে অধ্যাপক রহমান উল্লেখ করেন। আরো পড়তে পারেন: পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের দাপটে যাত্রীরা অসহায় কেন এত আলোড়ন তুলেছে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন? বাংলাদেশে প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইনে যা আছে কতটা অনিরাপদ ঢাকার গণপরিহণ নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে ঢাকা শহরে পুলিশ যেমন ট্রাফিক সপ্তাহ পালন করছে, আবার সড়ক পরিবহন আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়াও চলছে। +text: মোহাম্মদ বিন সালমান ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। মার্কিন সেনেট একই সঙ্গে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগজির হত্যার জন্য সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে দায়ী করে আরেকটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে এই প্রথমবারের মতো ১৯৭৩ সামরিক শক্তি বিষয়ক আইন ব্যবহার করে ইয়েমেনে সৌদি অভিযানের ওপর সেনেটে ভোট গ্রহণ করা হলো। এই ভোটে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কিছু সতীর্থ রিপাবলিকান দলীয় অবস্থানের বিরুদ্ধে গিয়ে ডেমোক্র্যাটদের সাথে যোগ দেন। তবে এই প্রস্তাবকে মূলত প্রতীকী হিসেবে দেখা হচ্ছে এবং এটা আইন হিসেবে গৃহীত হবে এমন সম্ভাবনাও কম। ইয়েমেনে যুদ্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্র গত মাস থেকেই সৌদি যুদ্ধবিমানগুলিতে তেল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। যুবরাজ মোহাম্মদের প্রশ্নে মার্কিন সেনেটের সিদ্ধান্ত ছিল সর্বসম্মত। সেনেটর বার্নি স্যান্ডার্স সিনেটের ভোট নিয়ে কথা বলছেন। আরো পড়তে পারেন: গণতান্ত্রিক অধিকার হুমকির মুখে: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ড. কামালের গাড়িবহরে হামলার অভিযোগ 'হৃৎপিণ্ড' নিতে ফিরে এলো যে বিমান সেনেটের এই প্রস্তাবে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, ক্ষমতাধর পত্রিকা ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক জামাল খাসোগজির হত্যার জন্য যেসব সৌদি দায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ভার্মন্টের স্বতন্ত্র সেনেটর বার্নি স্যান্ডার্স এই প্রস্তাবের উপস্থাপকদের একজন। ইয়েমেনের যুদ্ধের ব্যাপারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, "আজ সৌদি আরবের স্বৈরশাসকদের প্রতি আমরা বলেছি যে আমরা তাদ��র সামরিক অ্যাডভেঞ্চারের অংশ হতে চাই না।" জামাল খাসোগজির হত্যায় সৌদি যুবরাজের সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে রিপাবলিকান সেনেটর বব কর্কার বলেন, "আজ যদি কোন জুরির সামনে যুবরাজের বিচার হতো তাহলে আমার ধারণা ৩০ মিনিটের মুখে তিনি দোষী প্রমাণিত হতেন।" বিবিসির সংবাদদাতা বারবারা প্লেট আশার বলছেন, এই দুটি প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে এই বার্তাই দেয়া হয়েছে যে বেশিরভাগ সেনেটর মনে করেন সৌদি আরবের সাথে বর্তমান সম্পর্ক এভাবে চলতে পারে না। সৌদি আরবের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত সম্পর্ককে তারা মূল্য দেয় ঠিকই, কিন্তু যুবরাজ মুহাম্মদের নেতৃত্বের প্রশ্নে তারা প্রচণ্ড অস্বস্তির মধ্যে রয়েছেন। ইয়েমেনে লড়াইয়ের প্রতিবাদের তিউনিশিয়াতে বিক্ষোভ। যুবরাজের বিদেশি অভিযান বিশেষভাবে ইয়েমেনের যুদ্ধে মানুষের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে তাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে বলে বিবিসি সংবাদদাতা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, পরিস্থিতি পাল্টে যায় যখন জামাল খাসোগজির নৃশংস হত্যার বিস্তারিত প্রকাশ হতে শুরু করে। অনেক সেনেটর মনে করেন, সৌদি আরব এমন এক মিত্র-দেশ যে বিশ্বাস করে এ ধরনের কাজ করে সে সহজেই পার পেয়ে যাবে। সৌদি আরবকে সমর্থন করে হোয়াইট হাউজ যে অবস্থান নিয়েছে, অনেক সেনেটর তাতে হতাশ। সেনেটর বব কর্কার উল্লেখ করেন, মার্কিন সেনেটে দ্বিদলীয় কর্মকাণ্ডের মুলে রয়েছে এই ধারণা যে প্রশাসনের স্বার্থ এবং মার্কিন মূল্যবোধ রক্ষার মধ্যে ভারসাম্য বজায় থাকছে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনেট ইয়েমেনে সৌদি আরবের অভিযান থেকে মার্কিন সামরিক সাহায্য প্রত্যাহার করে নেয়ার পক্ষে এক প্রস্তাবে ভোট দিয়েছে। +text: শহরে কিছু স্কুল অনলাইনে শিক্ষাদান কর্মসূচি চালু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অসচ্ছল শিক্ষার্থী যারা অনলাইন ক্লাসে যোগ দিতে পারছেন না তাদের জন্য কোনো সুদ ছাড়া একটা ঋণ দেয়া হবে মোবাইল কেনা বাবদ। এখন প্রশ্ন এই ঋণ পাবেন কারা? কীভাবে ঠিক করা হলো তালিকা এবং কীভাবে তারা পুরো প্রক্রিয়া নিশ্চিত করবে? মোবাইল ঋণের পরিকল্পনা যেভাবে বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের একজন সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বিবিসি বাংলাকে বলেন, "আমরা অনলাইনে যখন ক্লাস নেয়ার কথাবার্তা শুরু করি, পাবলিক ও প্রাইভেটে, তখন সক্ষমতার ��ায়গা দেখতে চাই।" তিনি জানান এখানে সক্ষমতা বলতে বুঝানো হয়েছে মূলত কারিগরি ব্যাপার, অনলাইনে ক্লাস নেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কতটা প্রস্তুত? সাথে কতটা প্রস্তুত শিক্ষার্থীরা। এই পটভূমিতে ১৯ হাজার ছাত্র ও ৭ হাজার শিক্ষকের ওপর একটি জরিপ করা হয় ইউজিসির পক্ষ থেকে। সেই জরিপে বেরিয়ে আসে ১৫% শিক্ষার্থীর কোন স্মার্টফোন নেই। মাত্র ৮% শিক্ষার্থীর ল্যাপটপ আছে। এমন অবস্থায় যখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ও মঞ্জুরি কমিশন একমত হয় যে তারা অনলাইনে ক্লাস নিতে প্রস্তুত, অনেক ছাত্র-ছাত্রীই অনলাইনে ক্লাস করার ব্যাপারে অনাগ্রহের কথা প্রকাশ করে, এর পেছনে কারণ হিসেবে দেখানো হয় স্মার্টফোন না কিনতে পারা। বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দারা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সুবিধা পান না আর্থিক অসচ্ছলতায় কত শতাংশ ছাত্র অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর বিবিসি বাংলাকে বলেন, যখন এই জরিপ শেষ হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে একটা সমন্বয় তৈরি হয় তখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের কাছে দাখিল করা অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের একটা তালিকা তৈরি করে। এই তালিকায় জায়গা পেয়েছে ৪১ হাজার ৫০১ জন শিক্ষার্থী। নানা প্রক্রিয়া অবলম্বন করে তথ্যে যাচাই বাছাই করে এই তালিকা করা হয়। টাকা কোথা থেকে আসবে মি. আলমগীর বিবিসি বাংলাকে বলেন, করোনাভাইরাসে শিক্ষা কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়েছে। "বেশ লম্বা একটা সময় বাজেটের টাকার বেশ বড় একটা অংশ খরচ হয়নি। এই অংশের অর্থ তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে সমন্বয় করা হয়েছে।" অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম যথাযথভাবে চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই এটা করা হয়েছে। প্রতিজনের জন্য একটি মোবাইলের জন্য বাজেট রাখা হয়েছে ৮ হাজার টাকা। "এটা তাদের দেবে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়। অনুষদের ডিন, বিভাগের চেয়ারম্যান, রেজিস্ট্রার মিলে এটা নিশ্চিত করবেন," বলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের এই সদস্য। "এরপর ছাত্র ক্লাসে যোগ না দিলে তখন প্রশ্ন তোলা যাবে।" তবে এই ঋণ ফেরত নিতে কোনো তাড়াহুড়ো না করলেও টাকা ফেরত নেয়া হবে এটা নিশ্চিত করতেও পরিকল্পনা করেছে ইউজিসি। যেটা বাস্তবায়ন করবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। "টাকাটা তাদের শিক্ষাজীবনের যে কোনো একটা সময় ফেরত দেয়ার চেষ্টা করবে। এক বা দুই ইনস্টলমেন্টে, এই টাকা (ফেরত) দেয়া ছাড়া ট্রান্সক্রিপ্ট, সার্টিফিকেট, মার্কশিট এগুলো কিছুই তুলতে পারব��� না শিক্ষার্থী।" শিক্ষার্থীরা কী বলছেন এই ইস্যুতে শিক্ষার্থীরা আসলে দ্বিধাবিভক্ত। অনেকে বলছেন এখানে টাকার সদ্ব্যবহার কতটা হবে সেটা নিয়ে অনিশ্চিত তারা। আবার অনেকে বলছেন, পুরো প্রক্রিয়ার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কোভিড পরিস্থিতি কতটা থাকবে সেটাও একটা প্রশ্ন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান রুহান বলেন, শিক্ষার্থীরা যেখানে থাকে সেখানকার নেটওয়ার্কের অবস্থাও একটা বড় বিষয়৷ সৈকত বলেন, "পিছিয়ে পড়া এলাকায় যারা আছে তারা খুশি। কিন্তু একটা বড় অংশ এটা মনে করে যে এই ঋণ তেলা মাথায় তেল দেওয়ার মত হবে।" আশিক মাহমুদ বলেন, "প্রথমত ৮০০০ টাকায় স্মার্টফোন হয় না। দ্বিতীয়ত ফোনের চেয়ে ইন্টারনেট ডাটা প্যাকের খরচ অনেক বেশি। তৃতীয়ত এই ঋণ অর্ধেক শিক্ষার্থীও নিবে না।" যদিও ৮ হাজার টাকার মধ্যে এখন বাজারে চলনসই স্মার্টফোন পাওয়া যাচ্ছে। সিলমা সুবাহ বিবিসি বাংলাকে জানান, "অনলাইন ক্লাসের জন্য মাসে অন্তত ৩০০ টাকার ডাটা প্যাকেজ লাগবে।সেই টাকাটা অনেকের কাছেই অনেক বেশি।কারণ এইসকল শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ টিউশনি করে টাকা উপার্জন করে। এখন যেহেতু টিউশনি নাই, এই টাকাটা অনেকের জন্যই ব্যয়সাপেক্ষ।" করোনাভাইরাসের কারণে অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন অনলাইনে ক্লাস চলছে, যেখানে অনেক অসচ্ছল শিক্ষার্থী আছেন যারা ডিজিটাল কোনো মাধ্যমের অভাবে সেই ক্লাসে অংশ নিতে পারছেন না। +text: ভুয়া খবরের বিরুদ্ধে ভারতের কাগজে হোয়াটসঅ্যাপের বিজ্ঞাপন। ডিজইনফোল্যাব নামের প্রতিষ্ঠানটির রিপোর্টে বলা হয়, এসব ভুয়া ওয়েবসাইট ভারতকে সুবিধা দেয়ার জন্য পাকিস্তানের ক্রমাগত সমালোচনার মাধ্যমে ইইউ এবং জাতিসংঘকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। যুক্তরাষ্ট্র, ক্যানাডা, বেলজিয়াম এবং জেনেভাসহ ৬৫টি দেশ থেকে এগুলো কাজ করে। তারা সংবাদের পাশাপাশি কাশ্মীর বিষয়ে পাকিস্তানের ভূমিকার সমালোচনা করে বিক্ষোভ ও অন্যান্য ইভেন্টের ভিডিও প্রচার করে। ইউ ডিজইনফোল্যাবের প্রতিবেদনে এই ভূয়া সাইটের উল্লেখ রয়েছে। ডিজইনফোল্যাবের খবরে বলা হয়, বেশিরভাগ ভুয়া ওয়েবসাইটের নাম রাখা হয়েছে বন্ধ হয়ে যাওয়া সংবাদপত্র এবং সংবাদমাধ্যমের ভুয়া সাইটের নামে। বিশ্বের নানা দেশের খবর প্রচারের পাশাপাশি এসব সাইট থেকে কাশ্মীর সংঘাতে পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করা হয়। ডিজইনফোল্যাব তার রিপোর্টে বলছে, তারা প্রমাণ পেয়েছে যে এসব ওয়েবসাইটের একটির মালিক ভারতীয়, এবং এই মালিকের সাথে দিল্লির একটি গোষ্ঠীর সম্পর্ক রয়েছে। আরো পড়তে পারেন: পেঁয়াজের দাম কী কারণে দু’শ টাকা ছাড়াল মোদীর 'জাল চিঠি' নিয়ে খবর প্রকাশে দিল্লির ক্ষোভ কোথা হতে আসে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা? ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি গবেষণা সংস্থা বলছে, তারা ফেইক নিউজ বা ভুয়া খবর ছড়ায় এমন ২৬০টিরও বেশি ওয়েবসাইটের সন্ধান পেয়েছে যারা বিশ্বব্যাপী ভারত সরকারের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছে। +text: বায়ু দূষণের দিক থেকে শীর্ষ পাঁচটি দেশের একটি বাংলাদেশ। এই গ্রামের একজন বাসিন্দা মোঃ হারুন অর রশিদ বলছেন, পাঁচ বছর আগেও যেখানে তাদের গ্রামের বাতাস অনেকটা পরিষ্কার বলে মনে হতো, সেখানে কয়েক বছর আগে আশেপাশে কয়েকটি ইটভাটা তৈরি হওয়ার পর থেকে যেন বাতাস অনেকটা বদলে গেছে। তিনি বলছেন, আশেপাশে ইটের ভাটা হওয়ার পর ভাটাওয়ালারা মাটি কিনে নিয়ে যাচ্ছে, আবার তারা যে ইট পোড়ায় তাতে কালো ধোঁয়া বের হয়। "এসব ভাটায় সারাক্ষণ ইঞ্জিনের গাড়ি যাতায়াত করে, সেগুলো থেকেও সারাক্ষণ ধোঁয়া বের হয়, শব্দ হয়। আমাদের গ্রামের বাতাসটা যেন মনে হয় আগের চেয়ে ভারী হয়ে যাচ্ছে।" তিনি জানান, গ্রামের মানুষের মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়ার কষ্ট বা কাশি বাড়ার মতো সমস্যাও দেখা যাচ্ছে। শুধু গ্রামেই নয়, বায়ু দূষণের এই সমস্যা এখন সমগ্র বাংলাদেশের। বায়ু দূষণ নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংস্থা 'স্টেট অফ গ্লোবাল এয়ার' তাদের প্রতিবেদনেও বিষয়টি উঠে এসেছে। সেখানে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বাসিন্দাদের ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ কোন না কোন ভাবে বায়ু দূষণের মধ্যে বাস করছে। এসব দেশের মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি মানুষ কোন দূষিত এলাকায় বাস করে। বায়ু দূষণের কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর মারা যাচ্ছে ১ লাখ ২৩ হাজার মানুষ আর ভারত ও চীনে মারা গেছে ১২ লাখ মানুষ। আরো পড়ুন: বায়ু দূষণ যেভাবে আপনার বুদ্ধি কমাতে পারে পরিবেশ দূষণের কারণে কী কী রোগ হতে পারে? সিএনজির ছাদে গাছ লাগিয়ে ঢাকার পরিবেশ রক্ষার চেষ্টা সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে বলছে, ২০১৭ সালের হিসাবে প্রতি ১০জনের মধ্যে একজন বায়ুদূষণের কারণে মারা যাচ্ছে। বায়ু দূষণের স্বীকার হয়ে যে দশটি দেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি মারা যাচ্��ে, সেসব দেশের মধ্যে রয়েছে চীন, ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ, নাইজেরিয়া আর যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। সংস্থাটি বলছে, সড়ক দুর্ঘটনা বা ধূমপানের কারণে মৃত্যুর হারের তুলনায় ২০১৭ সালে বায়ুদূষণের ফলে বেশি মানুষ মারা গেছে। এর মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। বায়ু দূষণের স্বীকার হয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় প্রতিটি শিশুর ৩০মাস করে আয়ু কমে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি, যদিও উন্নত দেশগুলোয় এই হার গড়ে পাঁচ মাসের কম। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণের শিকার দূষিত বাতাসের কারণে যেসব রোগ হতে পারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় বায়ুতে ক্ষতিকর বস্তুকণার পরিমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেয়া সীমার দশগুণের বেশি। ঢাকার একজন বাসিন্দা নেওয়াজ চৌধুরী বলছেন, সবসময়ে ধোঁয়া, ধুলার ভেতর দিতে যাতায়াত করার কারণে তার মাঝে মাঝে শ্বাসকষ্ট হয়। সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন দূষিত বাতাসের মধ্যে থাকলে যেসব রোগ হতে পারে, তার মধ্যে আছে - বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি প্রজন্ম যদি দীর্ঘসময় বায়ুদূষণের মধ্যে কাটিয়ে দেয়, তার মারাত্মক প্রভাব পড়ে পরবর্তী প্রজন্মের ওপর। বায়ু দূষণের সঙ্গে ডায়াবেটিসের সম্পর্ক দেখতে পাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। বায়ু দূষণ কমানো গেলে ৫ ভাবে উপকৃত হবে বাংলাদেশ বায়ু দূষণ রোধ করা গেলে মোটামুটি পাঁচটি উপায়ে উপকৃত হবে বাংলাদেশ। ১. গড় আয়ু বাড়বে স্টেট অব গ্লোবাল এয়ার বলছে, বায়ু দূষণ রোধ করতে পারলে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বাড়বে এক বছর তিন মাসের বেশি। ২. জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এদিকে অধ্যাপক আবদুস সালাম বলছেন, বায়ু দূষণ রোধ করা গেলে সবচেয়ে বড় যে উপকারটি হবে সেটি হবে 'জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সহায়তা'। বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রকোপ রোধে বায়ু দূষণ রোধ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ৩. রোগ সংক্রমণ থেকে রক্ষা বায়ু দূষণের জন্য মানুষের শরীরে যেসব রোগের সংক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে, সেগুলো থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে যদি দূষণ রোধ করা যায়। ড. সালাম বলেন, "মানুষের স্বাস্থ্য সমস্যা কমিয়ে দেবে। ফুসফুসের সমস্যা, হৃদরোগ, চর্মরোগসহ অনেক রোগ কমে যাবে।" ৪. প্রতিবন্ধী সমস্যা প্রতিবন্ধী শিশু জন্ম নেয়ার সংখ্যা কমে যাবে, তেমনি শিশু ও মানুষের গড় আয়ু বাড়বে। মি. সালাম বলছেন, একটি প্রজন্ম যদি দীর্ঘসময় ধরে বায়ু দূষণের ভেতর দিয়ে যায়, তাহলে তাদের পরবর্তী প্রজন্ম অনেক ক্ষতির মুখোমুখি হবে। সেটা কাটিয়ে ওঠা যাবে দূষণ রোধ করতে পারলে। ৫. অর্থনৈতিক সুবিধা বায়ু দূষণ কমানো গেলে একদিকে যেমন মানুষের অসুস্থতা কমবে, গড় আয়ু বাড়বে, সময় সাশ্রয় হবে, পাশাপাশি বেড়ে যাবে জিডিপিও। ড. সালাম বলছেন, ' নিজেদের আর্থিক সাশ্রয় যেমন হবে, তেমনি জনস্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটবে।'' বাংলাদেশের শহরগুলোর যানজটের কারণে বায়ুদূষণ বাড়ছে বলে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। যেসব কারণে বাংলাদেশে বায়ু দূষণ এতো বেশি? বায়ু দূষণ নিয়ে গবেষণা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম। তিনি বলছেন, গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলের দেশ হওয়ায় শীতের সময়ে হিমালয়ের পরের সব দূষণ এদিকে চলে আসে। "কিন্তু তার সঙ্গে যোগ হয় আমাদের নিজেদের অনেক দূষণ।" দূষণ রোধে কর্তৃপক্ষের জোরালো পদক্ষেপের অভাবে বায়ু দূষণের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আসছে না বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলছেন, অপরিকল্পিতভাবে শিল্পকারখানা গড়ে ওঠা, ঢাকার মতো বড় শহরের চারপাশে ইটভাটা, শহরের মধ্যে নানা কারখানা স্থাপন তো বায়ু দূষণের একটি কারণ। ''সেই সঙ্গে শহরের প্রচুর ধুলা এবং নির্মাণ কাজের বায়ু দূষণ হচ্ছে। ট্রাফিক জ্যামের কারণে গাড়িগুলো রাস্তায় অতিরিক্ত সময় ধরে চলছে, সেগুলো অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ করছে, এসবও বায়ু দূষণ বাড়িয়ে দিচ্ছে।'' তিনি বলছেন, বায়ু দূষণের কারণে পরিবেশ অতিরিক্ত গরম হয়ে যাচ্ছে, সেই গরম ঠাণ্ডা করার জন্য মানুষ অতিরিক্ত এসি ব্যবহার করছে, আবার তাতে বায়ু দূষণ আরো বাড়ছে। বায়ুদূষণের ফলে আমাদের শরীরে যা ঘটে বায়ুদূষণ কীভাবে কমানো যেতে পারে? ড. আবদুস সালাম বলছেন, বায়ু দূষণ কমাতে প্রত্যক্ষ আর অপ্রত্যক্ষ ব্যবস্থা রয়েছে। প্রত্যক্ষ ব্যবস্থাগুলো হলো রাস্তায় পানি দিয়ে ধুলা নিয়ন্ত্রণ বা ময়লাগুলো পুড়িয়ে ফেলার মতো নানা ব্যবস্থা। অপ্রত্যক্ষ ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে: বায়ু দূষণের কারণেও অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষ। বিশ্বজুড়ে বায়ু দূষণের চিত্র . বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয় . পৃথিবীর ৯১ শতাংশ মানুষ এমন জায়গায় বসবাস করে যেখানে বায়ু দূষণের মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে বেশি . পৃথিবীর যে ২০টি শহর সবচেয়ে বেশি বায়ু দূষণের মধ্যে আছে তার মধ্যে ভারতের ১৪টি শহর রয়েছে। উত্তরাঞ্চলের কানপুর শহর এ তালিকায় সবচেয়ে উপরে . বিশ্বজুড়ে প্রতি ১০জনের মধ্যে নয়জন দূষিত বায়ু গ্রহণ করে গবেষকরা বলছেন, যেসব বয়স্ক মানুষের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কম তারা সবচেয়ে বেশি বায়ু দূষণের ঝুঁকিতে আছেন। কারণ তারা প্রায়ই ঘরের বাইরে নানা ধরণের কাজের সাথে সম্পৃক্ত থাকেন। বাংলাদেশের রাজবাড়ী জেলার একটি গ্রাম কল্যাণপুরের বাসিন্দাদের বেশিরভাগই কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত, যে গ্রামটিতে বিদ্যুৎ এসেছে কিছুদিন আগে। +text: এর আগে গত মার্চ মাসে অভিযুক্ত ব্রেন্টন ট্যারান্টকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। বিশেষজ্ঞরা তাকে পরীক্ষা করে দেখবেন বিচারের মুখোমুখি করার জন্যে তিনি মানসিকভাবে সুস্থ আছেন কীনা। হাইকোর্টের বিচারক ক্যামেরন ম্যানডার শুক্রবার এই আদেশ দিয়েছেন। গত মাসে নিউজিল্যান্ডে চালানো ওই হামলায় ৫০ জন নিহত হয়। অভিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ২৮ বছর বয়সী ব্রেন্টন ট্যারান্টের বিরুদ্ধে মোট ৫০টি হত্যা এবং ৩৯টি হত্যা-প্রচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। ব্রেন্টন ট্যারান্ট কারাগার থেকে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে আদালতে হাজিরা দেন। এসময় আদালতে হতাহতদের অনেক আত্মীয় স্বজন উপস্থিত ছিলেন। নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে এর আগে এতো বড় ধরনের হামলার ঘটনা আর কখনো ঘটেনি। কী হলো আদালতে? শুক্রবার সকালে বিচারক ম্যানডের ব্রেন্টন ট্যারান্টের মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে দুটো পরীক্ষার আদেশ দেন। সংক্ষিপ্ত এই শুনানির সময় তাকে সব কথাবার্তা মনোযোগ দিয়ে শুনতে দেখা গেছে। তবে তিনি কোন মন্তব্য করেন নি। আদালতের পুরো প্রক্রিয়াটিই দেখেছেন অভিযুক্ত এই ব্যক্তি। তিনি যেমন বিচারককে দেখেছেন, তেমনি দেখেছেন আইনজীবীদেরও, পাশাপাশি শুনানিতে কী বলা হচ্ছে সেসবও তিনি শুনতে পেরেছেন। এর পরের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৪ই জুন। লিনউড মসজিদের ভাঙা জানালা। আরো পড়তে পারেন: মসজিদে হামলা: খুতবায় ক্রাইস্টচার্চ মসজিদের ইমাম যা বললেন মুসলিমদের সাথে একাত্মতায় নিউজিল্যান্ডে নারীদের মাথায় স্কার্ফ 'অন্যদের বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন দিলেন আমার স্ত্রী' আল নূর মসজিদে হামলায় ওমর নবী হারিয়েছেন তার পিতাকে। পরে আদালতের বাইরে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, "আমরা তাকে মা���তে চাই না। আমরা চাই তাকে শাস্তি দেওয়া হোক। ৫০ জন মানুষকে হত্যা এবং আরো বহু মানুষকে আহত করার শাস্তি।" লিনউড মসজিদে চালানো হামলা থেকে বেঁচে গেছেন তোফাজ্জল আলম। তিনি বলেছেন, "আমি আমার ৫০ জন বন্ধুকে হারিয়েছি। এদের সাথে প্রত্যেক শুক্রবারে আমার দেখা হতো। বন্দুক দিয়ে সে যখন হামলা করলো তখন আমি তাকে দেখতে পারিনি।" "৫০ জন মানুষকে মেরে ফেলার পর সে কেমন বোধ করছে এটা দেখার জন্যে আজ আমি এখানে এসেছিলাম," বলেন তিনি। ক্রাইস্টচার্চ হামলায় স্ত্রীকে হারিয়েছেন ফরিদ উদ্দীন আরো পড়তে পারেন: জলবায়ু পরিবর্তন: বলি হচ্ছে দুই কোটি বাংলাদেশী শিশু বিমানটি পড়ে যাওয়া থামাতে পারেননি পাইলটরা নাচতে অস্বীকার করায় স্ত্রীর মাথা ন্যাড়া করা হলো ক্রাইস্টচার্চের দুটো মসজিদে হামলার অভিযোগে অভিযুক্তের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। +text: মুঘল সম্রাট শাহজাহান ১৭ শতকে ভারতের আগ্রায় তাজমহল তৈরি করেন কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই এটির রঙ ক্রমেই অনেকটা সবুজ হয়ে উঠছে। পরিবেশবিদরা বলছেন, নানা পোকামাকড়ের বিষ্ঠা জমে জমে তাজমহলের সাদা মার্বেল অনেকটা সবুজাভ হয়ে উঠেছে। পাশের দূষিত যমুনা নদী থেকে পোকামাকড় আসছে তাজমহলে এজন্য পাশের যমুনা নদীর দূষণকে দায়ী করেছেন তারা। গত কয়েক দশক ধরেই অপরিকল্পিত নগরায়ন, পরিবেশ দূষণ এবং যুদ্ধের সময়কার বোমা হামলার কারণে কারণে ১৭ শতকের এই স্থাপত্যটি হুমকির মুখে রয়েছে। মুঘল সম্রাট শাহজাহান তার স্ত্রী মমতাজ মহলের সমাধি আর স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে ভারতের আগ্রায় এই স্থাপত্যটি তৈরি করেন, যিনি সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান। এটিকে বিশ্বের সপ্তাশ্চর্যের একটি বলে মনে করা হয়। পোকামাকড়ের বর্জ্যে তাজমহলের দেয়াল সবুজাভ হয়ে উঠছে বিবিসির গীতা পাণ্ডে বলছেন, মূলত পাঁচটি কারণে তাজমহল হুমকির মুখে। তার একটি পোকার বর্জ্য। এছাড়া কাছের তেল পরিশোধন কেন্দ্রের কারণেও এটির মার্বেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে উঠছে। এজন্য অবশ্য কাদামাটির প্রলেপ দিয়ে মার্বেলের দূষণ কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। দূষণের আরো একটি কারণ, তাজমহলের কাছেই উত্তর প্রদেশ সরকারের একটি বিপণি বিতান তৈরি করা। সন্ত্রাসী হামলার আশংকায় সম্প্রতি তাজমহলের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে কাছাকাছি থাকা ২০০ বছরের পুরনো একটি শ্মশানের কাঠ পোড়া ধোয়া দীর্ঘদ��ন ধরে তাজমহলের ক্ষতি করে চলেছে। সম্প্রতি ভারতের হাইকোর্ট এটি হয় সরিয়ে নেয়া অথবা বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছে। তাজমহল সর্বশেষ যে হুমকির মুখে পড়েছে, তা হলো সন্ত্রাসী হামলা। আল কায়েদা এখানে হামলা চালাতে পারে, এরকম হুমকির পর সম্প্রতি তাজমহলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ২০০১ সালেও পাকিস্তানি লস্কর ই তৈয়বা এখানে হামলা চালাতে পারে বলে তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। ভারতের অন্যতম প্রধান নিদর্শন তাজমহল বেশ কিছুদিন ধরেই হুমকির মুখে পড়েছে। +text: নতুন সড়ক পরিবহন আইনটির প্রয়োগ কয়েক দফা পিছিয়েছে। কবে থেকে এটি কার্যকর হবে সেটিও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, তারা নতুন সড়ক পরিবহন আইন মানেন না। অন্যদিকে মালিকরা বলছেন, তারা আইনটি কার্যকর করার আগে আরও সময় চান। কী কারণে এটি কার্যকর করতে এত সময় লাগছে? যা বলছেন চালকেরা বাংলাদেশে রোববার থেকে নতুন সড়ক পরিবহন আইন পুরোপুরি প্রয়োগ হবার কথা ঘোষণা করেছিলেন পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সকাল থেকে ঢাকার রাস্তায় গণ-পরিবহনের সংখ্যা কিছুটা কমও ছিল। তবে আইনটি প্রয়োগের তেমন কোন লক্ষণ দেখা যায়নি। লিটন শেখ নামে একজন বাসচালক বলেন, নতুন আইন কার্যকর হলে তারা গাড়ি চালানো বন্ধ করে দেবেন। নতুন আইন মানতে নারাজ চালকরা। তিনি বলছেন, "যেভাবে আইন করেছে এই অবস্থায় গাড়ি চালানো যাবে না। কারণ রাস্তার পরিস্থিতি খুবই খারাপ। কারণ রিক্সা, অটো নিয়মমাফিক চলে না। শুধু শুধু আমাদের নিয়ম বেঁধে দেয়া হয়েছে" চালকদের যত জনের সাথে কথা হয় - তাদের সবারই আপত্তি একটি জায়গায়। নতুন আইনে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা ও পাঁচ বছরের সাজার ব্যবস্থা রাখা রয়েছে। চালকরা অপরাধ বারবার করলে কঠোর বিধিগুলো আরোপ হবে। ইচ্ছাকৃত দুর্ঘটনা, নির্ধারিত গতি সীমার অতিরিক্ত গতিতে বা ঝুঁকিপূর্ণভাবে গাড়ি চালানোর ফলে দুর্ঘটনায় কারো মৃত্যু হলে সেক্ষেত্রে আইনটিতে দণ্ডবিধির কয়েকটি ধারা সংযুক্ত করা হয়েছে। আরো পড়ুন: সড়ক দুর্ঘটনা: ৩০ বছর ধরে চলা ক্ষতিপূরণের আইনি লড়াই ঈদের মৌসুমে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বাড়ছে কেন? এসব ধারায় পরিবর্তন চান চালকেরা। বেশ ক্ষুব্ধভাবে সেটাই বলছিলেন আরেক বাস চালক রাজু আহমেদ। তিনি বলছেন, "আমার পক্ষে সম্ভব পাঁচ লাখ টাকা দেয়া? এই যে ধরে�� গুলি করে মারে, ড্যাগার দিয়ে মারে সেগুলোর কোন বিচার হয় না। কিন্তু আমি অ্যাকসিডেন্ট করলাম সেজন্য ৩০২ ধারা। মানে মার্ডার।" তিনি আরও বলছেন, "এই আইন কার্যকর হলে সারা বাংলাদেশের গাড়ি চালানো বন্ধ করে দেয়া দরকার।" চালকদের বক্তব্য - তারা সাবধান হয়েই গাড়ি চালান, কিন্তু যাত্রীদের যতটা সচেতন হওয়া দরকার সে ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেই।" বাংলাদেশ গাড়ির সংখ্যা ৪০ লাখের উপরে যার মধ্যে গণ-পরিবহনের সংখ্যা দেশে পাঁচ লাখের মতো। মালিকদের আপত্তি যা নিয়ে কিন্তু নতুন আইনটি প্রয়োগ হচ্ছে কিনা বা কবে থেকে হবে - তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও নিশ্চিত করে কোন কিছু বলতে পারেনি। ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ থেকে বলা হয়েছে তারা সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে আদেশের অপেক্ষা করছেন। মালিকদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে নতুন আইনে অনেক অসামঞ্জস্য রয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে এটি কার্যকর করার ব্যাপারে আরও সময় চাওয়া হচ্ছে। আরো পড়ুন: সড়ক দুর্ঘটনা: হাসপাতালে নেয়ার পথে এত মৃত্যু কেন? সড়ক পরিবহন আইনে কী আছে, পক্ষে বিপক্ষে যতো কথা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলছেন, "আইন যেটা সরকার চাচ্ছে সেটা কার্যকর হবে। কিন্তু কিছু কিছু অসামঞ্জস্য রয়েছে। সেগুলো সমাধান করতে হবে। আইনের বিধিটা করা উচিৎ।" "বিধি করার আগে আইন প্রয়োগ করলে তাতে জটিলতা হবে।" তিনি আরও বলছেন, "আইন প্রয়োগ নিয়ে আমাদের কোন দাবি নেই তবে আমরা পরামর্শ দিয়েছিলাম সময়টা বাড়ানোর জন্য। এখন সবাই বিআরটিএ-তে লাইন দিচ্ছে লাইসেন্স বা ফিটনেস করানোর জন্য। অনেক ভিড় সেখানে।" "আইন সম্মান করেই হোক আর যে কারণেই হোক সবাই যাচ্ছে। সেই সময়টুকু তাদের দেয়া দরকার।" গত বছর নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। তিনি বলছেন, গণ-পরিবহনের সংখ্যা দেশে পাঁচ লাখের মতো কিন্তু দেশে প্রাইভেট কার সহ নানা ধরনের গাড়ির সংখ্যা ৪০ লাখের উপরে। কিন্তু তাদের উপরেই চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে বেশি। আইনের সঠিক প্রয়োগ নিয়ে সন্দেহ চট্টগ্রামের একজন শিক্ষক ইশরাত জাহান ঢাকার মহাখালী বাস স্ট্যান্ডের কাছে সিএনজির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তিনি আইনটির সঠিক বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলছেন, "আইন সম্পর্কে এখনো শুনছি, এর আগেও শুনেছি। কিন্তু কথা হচ্ছে প্রয়োগ কতটা হবে। আইনতো আগেও ছিল। সেটাওতো প্রয��োগ হয়নি। তারা কি আগেও কখনো আইন মেনে গাড়ি চালিয়েছে?" বাংলাদেশে সড়ক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা আনার চেষ্টা হয়েছে বহুবার, কিন্তু সবসময়ই সেটি ব্যর্থ হয়েছে। গত বছর ঢাকায় বাস চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর ঢাকা জুড়ে সপ্তাহখানেক ধরে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের যে নজিরবিহীন আন্দোলন হয় - তারই পটভূমিতে নতুন সড়ক পরিবহন আইন পাশ হয়। একটি উন্নয়ন সংস্থার কর্মী মোহসিনা আক্তার বলছেন, "নতুন কিছু শুরু হতে সময় লাগে। সবাই কোন কিছু প্রথম দিকে গ্রহণ করতে চায় না। সেটা বাস্তবায়ন করাটাও গুরুত্ব হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই সেনসিটাইজ করার জন্য একটু সময় দরকার।" যাত্রী ও পথচারীরা প্রচুর আইন অমান্য করেন বলে চালকদের অভিযোগ। আইনটি পাশ হওয়ার পর থেকেই মালিক শ্রমিকরা এর কিছু ধারা নিয়ে আপত্তি করে আসছেন। গত বছর আগস্টে আইনটির খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। অক্টোবরে জাতীয় সংসদে পাশ হয়েছে। পাশ হওয়ার পর এক বছরের বেশি সময় পর পয়লা নভেম্বর থেকে সেটি কাগজেকলমে কার্যকর হয়েছে। কিন্তু কিছুটা সময় দেয়ার জন্য এর প্রয়োগ শুরুতেই কয়েক দফা পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের নিরাপদ সড়ক বিভাগের পরিচালক শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রাব্বানী বলছেন, "সব পক্ষের সাথে কথা বলেই এই আইন পাশ হয়েছে। মালিকের সাথে, শ্রমিকের সাথে কথা বলেই আইন হয়েছে। সরকার একা তো আইন পাশ করেনি।" কিন্তু কবে এটি প্রয়োগ শুরু হবে সেনিয়ে তিনি পরিষ্কার করে কিছু বলতে পারেননি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তার ২০১৮ সালের সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক বৈশ্বিক প্রতিবেদনে বলেছে বাংলাদেশে বছরে ২৪ হাজারের বেশি মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। অন্যদিকে পুলিশের তথ্য বলছে পাঁচ হাজারের বেশি। সংখ্যায় পার্থক্য থাকলেও বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন খাত যে দেশের সবচেয়ে বিশৃঙ্খল খাতগুলোর একটি - সেটি মানবেন অনেকেই। অন্যান্য খবর: লাভের জন্য আগাম পেঁয়াজ তুলছেন কৃষকেরা ব্রিটিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ধামাচাপার অভিযোগ বাংলাদেশ টেস্ট দলটি কি ঢেলে সাজানো প্রয়োজন? বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের মুখে গত বছর যে নতুন সড়ক পরিবহন আইন পাশ হয়েছিল - তার বাস্তবায়ন কয়েক দফা পিছিয়ে যাওয়ার পর রোববার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। +text: চিনি বা সুগারকে এখন ধূমপানের মতোই ক্��তিকর জিনিস হিসেবে দেখতে হবে, বলছেন গবেষকরা গত কয়েক দশকে ধূমপান নিরুৎসাহিত করতে এত কিছু করা হয়েছে যে সিগারেট খাওয়াটা অন্তত উন্নত বিশ্বে একটা প্রান্তিক এবং 'খারাপ' অভ্যাস হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এখন পশ্চিমা দেশে সিগারেটের প্যাকেট হয় সাদা, তাতে ধূমপানজনিত নানা রোগের বীভৎস ছবি থাকে - যা দেখে হয়তো অনেকেই সিগারেট খাবার ইচ্ছে চলে যাবে। অনেকেই মনে করছেন, চিনি, শর্করা বা সুগারকে নিয়েও হয়তো এরকমই একটা কিছু করতে হবে। সুগার-ভর্তি পানীয় বা কোমল পানীয়ের ওপর এখনই প্রচুর কর আরোপ করা হয়েছে। এখন ব্রিটেনের ইনস্টিটিউট অব পাবলিক পলিসি রিসার্চ নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলছেন, এসব পানীয়, এবং মিষ্টি ও স্ন্যাকস-কেও সাদা মোড়কে বাজারজাত করা উচিত - যাতে একে কম আকর্ষণীয় দেখায়। অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় জিনিস খাও কমাতেই এটা করা দরকার - এক রিপোর্টে বলছেন তারা। ব্রিটেনের জাতীয় ডায়েট এ্যান্ড নিউটিশন সার্ভে নামের এক জরিপে দেখা গেছে, একজন টিনএজারের (মোট ক্যালরির অংশ হিসেবে) যতটুকু সুগার খাওয়া উচিৎ - প্রকৃতপক্ষে সে তার তিনগুণ বেশি খাচ্ছে। আইপিপিআরের পরিচালক টম কিবাসি বলছেন, প্লেইন প্যাকেজিং অর্থাৎ মিষ্টিজাতীয় জিনিসকে অনাকর্ষণীয় সাদা প্যাকেটে বিক্রি করা শুরু করলে অতিরিক্ত সুগার খাওয়া নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এক বড় পরিবর্তন ঘটতে পারে। ব্রিটেনে এখন সিগারেটের প্যাকেটে ধূমপানজনিত রোগের ছবি থাকে এর সাথে জাংক ফুড বা চটজলদি খাবারের বিজ্ঞাপন প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথাও বলেছেন তিনি। ব্রিটেনে সরকারের মন্ত্রীরাও বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন বলে খবর বেরিয়েছে। কিন্তু অনেকে প্রশ্ন করছেন যে ব্যাপারটা বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে কিনা। চিনি-মেশানো খাবার উৎপাদন-বাজারজাতকরণের সাথে যুক্ত বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ইতিমধ্যেই এ নিয়ে আপত্তি তুলেছে। তারা বলছে এটা বাণিজ্যিক ও প্রতিযোগিতার স্বাথীনতার বিরোধী। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: আড়ং বন্ধের পর বদলি নাটক, সামাজিক মাধ্যম সরগরম কী ধরণের পুরুষ পছন্দ বাংলাদেশের মেয়েদের? মাঝরাতে রান্নাঘরের মেঝেতে কুমির দেখলেন যে নারী দুর্নীতির বিরুদ্ধে যেভাবে লড়াই করছে কেনিয়া ভেপিং বা ই সিগারেট ধূমপান কমাতে সহায়ক হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে কিন্তু তামাক শিল্পও এক সময় এই একই যুক্তি তুলে ধরেছিল, কিন্তু তা সরকারের কঠোর ধূমপানবিরোধী অবস্থানকে দমাতে পারে নি। ব্রিটেনে যখন স্বাস্থ্য আন্দোলনকারী ও শিক্ষাবিদরা জনসমাগম হয় এমন জায়গায় ধূমপান নিষিদ্ধ করার দাবি জানাচ্ছিলেন, তখন প্রথম দিকে সরকার তা উপেক্ষা করেছিল। কিন্তু পরে তা পরিবর্তিত হতে থাকে। নানা রকম পদক্ষেপ নেবার ফলে ব্রিটেনে গত ১০ বছরে ধূমপায়ীর সংখ্যা এক তৃতীয়াংশ কমে গেছে। এর কারণ হিসেবে অনেকে ভেপিং বা ই-সিগারেটের আবিষ্কারের কথাও বলেন কিন্তু কঠোর সরকারি নীতি নি:সন্দেহে একটা বড় ভুমিকা পালন করেছে। তাই চিনিজাতীয় খাবারের ক্ষেত্রেও সরকারি নীতি একটা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারে বলে অনেকে মনে করেন। আরো পড়তে পারেন: ধূমপান কমিয়ে লাভ নেই - ব্রিটেনে নতুন গবেষণা ধূমপান কমিয়ে লাভ নেই - ব্রিটেনে নতুন গবেষণা ধূমপান জিনিসটা আর আগের মত 'ফ্যাশনেবল' নেই। +text: আফগানিস্তানে মোতায়েন মার্কিন সৈন্য। বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশ আমেরিকা ১৮০টি দেশে ২০০,০০০ জন সামরিক কর্মচারী নিযুক্ত করেছে বলে জানা যাচ্ছে। কিন্তু মাত্র সাতটি দেশে মার্কিন বাহিনী প্রত্যক্ষভাবে সামরিক অভিযানের সাথে জড়িত রয়েছে বলে নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকা সম্প্রতি খবর দিয়েছে। কোন সাতটি দেশে তারা তৎপর? ১. আফগানিস্তান আফগানিস্তানে মোতায়েন মার্কিন সৈন্য সংখ্যা ১৩,৩২৯ জন। ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক এবং ওয়াশিংটন ডিসির ওপর হামলার পর তালেবানের সাথে লড়াই করার জন্য এদের পাঠানো হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এটি হচ্ছে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ। নিউইয়র্কে টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অফিস থেকে কংগ্রেসের জন্য তৈরি করা এক রিপোর্টে বলা হয়েছে: "মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তানে মোতায়েন থাকার প্রয়োজন এই কারণে যে সেই দেশকে নিরাপদ আশ্রয় বানিয়ে সন্ত্রাসীরা যেন আবার যুক্তরাষ্ট্রের ওপর হামলা চালাতে না পারে।" আমেরিকান সৈন্যরা আফগানিস্তানে আল-কায়েদা, তথাকথিত ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠী, তালেবান এবং তার বিভিন্ন উপগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে। ২. ইরাক ইসলামিক স্টেটকে পরাজিত করার সামরিক সাফল্যের পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে তার মূল লক্ষ্যে পরিবর্তন আনছে। লড়াই থেকে সরে এসে তারা তাদের সাফল্যকে ধরে রাখার চেষ্টা করছে। কংগ্রেসে মার্কিন সরকারের ��িপোর্ট অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র আইএস-এর উপগোষ্ঠীগুলোর ওপর হামলা অব্যাহত রাখবে। বাগদাদে মার্কিন সৈন্যের প্রহরা। এর কারণ হচ্ছে প্রাণঘাতী হামলার চালানোর ক্ষমতা এই দলগুলোর রয়েছে। এরা ইরাকের বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার বিরুদ্ধে বড় হুমকি। ইরাকে লড়াইয়ের পাশাপাশি মার্কিন সামরিক বাহিনী ইরাকি বাহিনী, কুর্দি পেশমার্গা বাহিনীকেও অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। ৩. সিরিয়া যুক্তরাষ্ট্র তার অনুগত সামরিক জোটকে নিয়ে ২০১৭ সালে ইরাকে অভিযান চালিয়ে আইএস-এর কবল থেকে ৪৫ লক্ষ লোককে মুক্ত করে। এর পর থেকে আইএস ইরাক এবং সিরিয়ায় তার দখলে থাকা ৯৮% ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ হারায়। সিরিয়ায় মার্কিন বিমান হামলা। সিরিয়ায় এখন ১৫০০ মার্কিন সৈন্য তৎপর রয়েছে। এরা সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্স, এসডিএফ-কে নানা ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার বলছে, এসব সাহায্যের মধ্যে রয়েছে বোমা বর্ষণ করা, স্থানীয় বাহিনীগুলোর মধ্যে সমন্বয় করা এবং অস্ত্র ও সরঞ্জাম সরবরাহ করা। ৪. ইয়েমেন মার্কিন বাহিনী ইয়েমেনে ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে কিছু বোমা বর্ষণ করছে। আল কায়েদা ইন দ্যা অ্যারাব পেনিনসুলা বা অ্যাকাপের বিরুদ্ধে তারা কিছু লড়াই চালিয়েছে। মার্কিন সরকার স্বীকার করেছে যে ইয়েমেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আলী আব্দুল্লাহ সালেহর বিরুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটকে তারা সীমিত পর্যায়ে সামরিক সমর্থন দিয়েছে। সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ইয়েমেনে লড়াই চালাচ্ছে। 'সীমিত সমর্থন' দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সাহায্যের মধ্যে রয়েছে গোয়েন্দা তথ্য প্রদান করা এবং জোটের বাহিনীগুলিকে সামরিক সরঞ্জাম প্রদান করা। তবে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি এই লড়াইয়ে অংশ নিচ্ছে না। ৫. সোমালিয়া সোমালিয়ায় মোতায়েন মার্কিন বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা প্রায় ৩০০ জন। ঐ দেশে তাদের লক্ষ্য হচ্ছে ইসলামিক স্টেট এবং আল-কায়েদার মতো গোষ্ঠীগুলির 'সন্ত্রাসবাদী হুমকি' মোকাবেলা করা। এই দেশেই ১৯৯৩ সালে মার্কিন সৈন্যরা এক চরম বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছিল। সোমালিয়ায় ১৯৯৩ সালে নিয়োজিত মার্কিন বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছে। মার্কিন স্পেশাল ফোর্সেস সে সময় যুদ্ধবাজ নেতা মোহামেদ ফারাহ্ আইদিদের একজন ডান হাতকে পাকড়াও করার চেষ্টা করছিল। কিন্তু পরিকল্পনাটি ব্যর্থ হয়। অভিযানে ১৮ জন মার্কিন সৈন্য নিহত, ৭০ জন আহত এবং দুটি ব্ল্যাকহক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়। বর্তমানে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা সোমালিয়ায় সন্ত্রাস-বিরোধী তৎপরতায় পরামর্শ দিচ্ছে। ৬. লিবিয়া এধরনের বিমানবাহী জাহাজ থেকেই লিবিয়ার ওপর বোমা বর্ষণ করা হয়। সরকারিভাবে লিবিয়ায় মার্কিন সৈন্যের সংখ্যা সীমিত। কিন্তু সৈন্য সংখ্যা কম থাকার মানে যে লিবিয়ার ভেতরে তাদের তৎপরতা কম, তা কিন্তু নয়। কংগ্রেসের রিপোর্ট অনুযায়ী, মার্কিন বাহিনী লিবিয়ার মরুভূমিতে লুকিয়ে থাকা ইসলামিক স্টেট-এর অনুসারী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে নিয়মিতভাবে বিমান হামলা চালায়। তারা সেখানে ড্রোন ব্যবহারও করে থাকে। ৭. নিজের নিজেরে ৫০০ মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা মোতায়েন রয়েছে। কিন্তু তাদের কথা ২০১৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত বিশ্ববাসীর অজানা ছিল। ঐ সময়ে ইসলামিক স্টেটের অনুগত এক বাহিনী মার্কিন সৈন্যদের ওপর চোরাগোপ্তা হামলা চালায়। এতে চার জন মার্কিন সৈন্য নিহত হয়। সে সময় এই ঘটনা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছিল। নিজেরে নিহত এক সৈন্যের স্ত্রী দাবি করেন, ঐ ঘটনার পর তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছ থেকে এক বিতর্কিত শোকবার্তা পেয়েছিলেন। যাতে লেখা ছিল: "সে (সৈন্য) জানতো, সে কিসের মধ্যে ঢুকছে।" ঐ ঘটনার দু'মাস পরে নাইজেরিয়ান সৈন্যদের সাথে টহল দেয়ার সময় মার্কিন সৈন্যদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, এইসব ঘটনার বাইরেও ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে আফ্রিকা মহাদেশে মার্কিন বাহিনী আরও ১০টি সামরিক সংঘাতে জড়িত হয়েছে। আরও পড়ুন: ফাইনালে হারের পর বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমের চিত্র কেমন ছিল? খালেদা জিয়ার দীর্ঘ কারাবাস, কোন পথে এগোবে বিএনপি? আপনার কাটা চুলে কোটি টাকার ব্যবসা গত অক্টোবর মাসে আফ্রিকার দেশ নিজের-এ ওঁত পেতে থাকা হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের চার জন সৈন্য নিহত হয়। মার্কিন জনগণ এই খবরে স্তম্ভিত হয়ে পড়ে। তখন থেকেই প্রশ্ন উঠতে থাকে পশ্চিম আফ্রিকার ছোট এই দেশটিতে মার্কিন সৈন্যরা ঠিক কী করছিল? +text: পুলিশের তদন্তে সাহায্য করেছে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ। ধর্ষণের শিকার সাত বছর বয়সী একটি মেয়ে শিশু। গত ২৬শে জুন বিদ্যালয় থেকে সে আর বাড়ি ফেরেনি বলে পুলিশকে জানায় শিশুটির বাবা-মা। নিখোঁজের পরদিন অচেতন ও রক্তাক্ত অবস্থায় মেয়েটিকে কাছের একটি বাস স��টেশনের নিরিবিলি এক কোণে পড়ে থাকতে দেখেন একজন সবজি বিক্রেতা। শিশুটিকে ডাক্তারে কাছে নিলে চিকিৎসকেরা নিশ্চিত করেন যে, সে ধর্ষণের শিকার এবং তার শরীরে ছুরিকাঘাতের চিহ্নও রয়েছে। এ খবর জানাজানি হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই রাস্তায় নেমে আসে শত শত প্রতিবাদী মানুষ। অপরাধীর বিচার চেয়ে তারা সকলে স্লোগান দিতে থাকে। ফলে বেশ একটা চাপ তৈরি হয় পুলিশের উপর। কিন্তু এই ঘটনায় পুলিশ কোনো সূত্র পাচ্ছিলো না। কারণ ঘটনার দিন মেয়েটির বিদ্যালয়ের সিসি ক্যামেরা ছিল নষ্ট। তাই, ক্লাস শেষে বিদ্যালয় থেকে মেয়েটি কার সাথে গিয়েছিল সেটি খতিয়ে দেখার কোনো উপায় ছিল না। কিন্তু মানুষের মিছিল, স্লোগান ও সামাজিক চাপের কারণে পুলিশ অনেকটা বেকায়দায় পড়েই বিদ্যালয়ের আশ-পাশের দোকানগুলোর সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা শুরু করে। এভাবে মোট চারশ' ঘণ্টা ফুটেজ দেখতে গিয়ে তিনটি ভিডিওতে আটকে যায় পুলিশের চোখ। একটি ভিডিওতে তারা দেখতে পায় যে মেয়েটি একজন লোকের সাথে যাচ্ছে। কারণ সে মেয়েটিকে মিষ্টি জাতীয় কিছু খেতে সেধেছে। তবে, বিপত্তিটা ছিল এই যে, সেই লোকটির চেহারাটা ওই ভিডিওতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিলো না। ধর্ষণের খবর ছড়িয়ে গেলে মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। কিন্তু পুলিশ হাল ছাড়েনি। তারা দেখলো যে সেই ব্যক্তির জুতোর ব্র্যান্ডটি স্পষ্ট করে পড়া যাচ্ছে। তাই, জুতোর সেই ব্র্যান্ড ধরেই অপরাধীকে পাকড়াও করার মিশনে নামে পুলিশ। ধর্ষককে পাকড়াও করার অংশ হিসেবে হোয়াটসঅ্যাপে মেয়েটির ছবি ছড়িয়ে দিয়ে বলা হয়, সে নিহত হয়েছে। এই বার্তাটি মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে মধ্য প্রদেশের ছোটো সেই শহরের বেশিরভাগ মানুষ। এভাবেই এই কমিউনিটির লোকজন ও পুলিশ একসাথে পরস্পরকে সহায়তার ভিত্তিতে কাজ করতে শুরু করে। তারপর অপরাধীর জুতোর ব্র্যান্ডের উপরে ভিত্তি করে চালানো সেই অনুসন্ধান থেকেই পুলিশ একটা স্পষ্ট ধারণা পায় এবং মাত্র সাতজন সন্দেহভাজনকে তারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের আওতায় নিয়ে আসে। তবে এরই মধ্যে ভারতে কিছু গণপিটুনির ঘটনাও ঘটে যায়। কারণ একদিকে হোয়াটসঅ্যাপের সেই ভাইরাল মেসেজ, অন্যদিকে অপরিচিত লোকজনদের প্রতি মানুষের অনাস্থা ও সন্দেহ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই সাতজন সন্দেহভাজনের মাঝখান থেকে আসল অপরাধীকে খুঁজে বের করে প��লিশ। আর এভাবেই হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল হওয়া মেসেজের সূত্রেই ধরা পড়ে ধর্ষণকারী। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: শিশুদের সাথে যৌনতায় আগ্রহীদের ফাঁদে ফেলেন যে নারী ভুয়া খবরের দায়ে ভারতে প্রশ্নের মুখে হোয়াটসঅ্যাপ ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও’র জেরে ভারতে হত্যাকাণ্ড ভারতের মধ্য প্রদেশে হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল হওয়া মেসেজ-এর সূত্র ধরে এক ধর্ষণকারীকে খুঁজে বের করেছে পুলিশ। +text: গুজবকে কেন্দ্র করে গণপিটুনির মতো সহিংস ঘটনা ঘটছে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে। তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গত কয়েকদিনে দেশটিতে ছেলেধরা সন্দেহে এমন বেশ কয়েকটি গণপিটুনির খবর সংবাদের শিরোনামে উঠে আসে। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, যারা নিহত হয়েছেন, তাদের কেউ কেউ ওই এলাকায় অনেক দিন ধরে বসবাস করতেন। কয়েকজন মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। কিন্তু অভিভাবকদের সন্দেহ হওয়ায়, তাদেরও বেধড়ক পেটানো হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। এমনকি গতকাল এক নারী তার বাচ্চার ভর্তির তথ্য জানতে স্কুলে এসে ছেলেধরা সন্দেহে জনতার পিটুনিতে নিহত হন। কিন্তু হঠাৎ করে দেশব্যাপী এই গণপিটুনির ঘটনা কেন ঘটছে। মানুষের এতো অসন্তোষের কারণ কি? আতঙ্ক বা নিরাপত্তাহীনতা সহিংস মানসিকতার জন্য দায়ী। মব সাইকোলজি মনোরোগবিদ মেহতাব খানম এই গণপিটুনির মানসিক প্রবণতাকে "মব সাইকোলজি" হিসেবে উল্লেখ করেন। তার মতে, যখন একটি সমাজে নির্দিষ্ট কোন বিষয় নিয়ে আতঙ্ক বা নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয় তখন তারা এক ধরণের মানসিক অবসাদে ভোগে। সেই থেকেই মানুষের মধ্যে এ ধরণের সহিংসতা দেখা দেয়। মিজ খানম বলেন, "মানুষ ইদানীং ছেলেধরার অনেক খবর পড়ছে, দেখছে। তো এই বিষয়টা তার মধ্যে একধরণের নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করছে। এ ব্যাপারে যখন সে কোন সহায়তা পাচ্ছেনা তখন তার মধ্যে মানসিক অবসাদ তৈরি হয়। তখন মানুষ পেটাতে দেখলে সে তার ওই বেসিক ধারণা থেকে ক্রোধ বা রাগ ঝাড়তে নিজেও সহিংস হয়ে ওঠে।" মব সাইকোলজির বৈশিষ্ট্য হল, যারা গণপিটুনি দেয়, তাদের উচিত অনুচিত বোঝার মতো বিবেক কাজ করেনা। কেউ সত্যতা যাচাই-এর চেষ্টা করেনা। তারা জানতেও চায়না কি কারণে মারামারি হচ্ছে। তারা তাৎক্ষণিক সেখানে অংশ নিয়ে তাদের ক্রোধের বহি:প্রকাশ ঘটায়। আরও পড়তে পারেন: ভুয়া খবরের দায়ে ভারতে প্রশ্নের মুখে হোয়াটসঅ্যাপ ভারতে বেশির ভাগ গণধোলাইয়ের কেন্দ্র��� এখন গরু গুজবে কান দিয়ে কেন মানুষ পিটিয়ে মারা হচ্ছে? বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে পরিস্থিতি সহিংস হয়ে উঠছে বলে মনে করেন অপরাধ বিশেষজ্ঞরা। বিচারহীনতা অপরাধ বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে এই গণপিটুনির পরিস্থিতিকে তিনটি উপাদানে ব্যাখ্যা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের শিক্ষক খন্দকার ফারহানা রহমান। সেগুলো হল: পুলিশ, আদালত এবং কারাগার। ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমের এই তিনটি উপাদান সমাজে অনুপস্থিতিকে এমন সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ বলে তিনি উল্লেখ করেন। মিজ রহমান বলেন, "বাংলাদেশে কয়েক বছর আগেও ডাকাত সন্দেহে অনেক মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলার ঘটনা ঘটেছে। কারণ দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপরে মানুষের আস্থা নেই। তারা মনে করে এই লোকটাকে ছেড়ে দিলে পরে তাকে আর আইনের আওতায় এসে সাজা দেয়া সম্ভব হবেনা। এজন্য তারা আইন হাতে তুলে নিচ্ছে।" "দেখা গেছে যে পুলিশ অপরাধীদের আটক করলেও আদালত তাদের খালাস দিয়ে দিচ্ছে বা জামিন মঞ্জুর করছে। আবার আদালত তাদের দোষী সাব্যস্ত করতে পারলেও পুলিশ তাদের আদালতের সামনে আনতে পারছেনা।" এর পেছনে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য, মানসিক অস্থিরতা এবং মাদকাসক্তিসহ নানা কারণ জড়িত বলে তিনি উল্লেখ করেন। "যখন কোন দেশ ট্রান্সফর্মেশনের দিকে যায়, অর্থাৎ বিশ্বায়ন, নগরায়ন, শিল্পায়ন, প্রযুক্তিগত উন্নয়নের দিকে ধাবিত হয়, তখন এই পরিবর্তনের সাথে নৈতিক মূল্যবোধগুলোর দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য এবং বিচ্ছিন্নতা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়। এখন আর পারিবারিক বন্ধন আগের মতো নেই।" "এজন্য তার যে মোটিভেশন দরকার সেটা কোথাও সে পাচ্ছেনা। বিকল্প না থাকায় পরিস্থিতি সমাজের প্রতিটি শ্রেণীর মানুষ হতাশায় ভুগছে, অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। যার কারণে ঘটছে একের পর এক সহিংসতার ঘটনা।" বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: 'প্রিয়া সাহার বক্তব্য না শুনে ব্যবস্থা নয়' ভারতের সুপারিশে বীর খেতাব পাওয়া পাকিস্তানি সৈনিক উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে বাধার সৃষ্টি করছে সিগারেটের বাট সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে মস্কোতে বিক্ষোভ ভারতে হোয়াটসঅ্যাপে এরকম ভুয়া বার্তা ছড়িয়ে পড়ছিল অত্যন্ত দ্রুতগতিতে। যার কারণে অনেকে গণপিটুনির শিকার হন। সহনশীলতার সংস্কৃতি নেই চট্টগ্রাম বিশ্ব সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডি��� অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদের মতে, পরিবেশ, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিবিসি বাংলাকে তিনি জানান, "আমরা এখন খুব অস্থির সময়ের মধ্যে বাস করছি। বেকারত্ব, সুস্থ বিনোদনের অভাব, সহনশীলতার অভাব মানুষকে অস্থির করে তুলছে। আর এ কারণেই গুজব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এই অসহনশীলতা মানুষকে নানা অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত করে। তখনই মানুষ অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠে।" এক্ষেত্রে সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজন বলে মনে করেন মিস্টার আহমেদ। তার মতে, শুধুমাত্র আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করলেই পরিস্থিতি বদলাবেনা। এজন্য প্রয়োজন সামাজিক অগ্রগতির জায়গাগুলো সুসংগঠিত করা। যেন সমাজের প্রতিটি স্তরে মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্মান ও সহনশীলতার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত করা যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর ভূমিকা নিলে গণপিটুনি প্রতিরোধ করা সম্ভব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপর হওয়া প্রয়োজন বর্তমানে ছেলেধরার যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং এর জেরে একের পর এক গণপিটুনির ঘটনাকে উদ্বেগজনক বলে আখ্যা দিয়েছেন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ নুরুল হুদা, "এটা সত্যি যে ছেলেধরা বিষয়টি মানুষের মধ্যে একটি আতঙ্কের সৃষ্টি করে। ছেলে মেয়ে হারিয়ে গেলে একটি পরিবারের ওপর দিয়ে কি ঝড় বয়ে যায় সেটা শুধু ভুক্তভোগীরাই বোঝে। সে কারণেই হয়তো লোকজনের বেপরোয়া হয়ে পড়েছে। এখন এটা গুজব নাকি সত্যি সেটা যাচাই করবে আদালত।" "তাই বলে আইন তো নিজের হাতে নেয়া যাবে না। আতঙ্ক তৈরি হলে আইনের দ্বারস্থ হতে পারে। কিন্তু শুধুমাত্র সন্দেহের বশবর্তী হয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিজেদের হাতে তুলে নেয়া কোন সময় সমর্থনযোগ্য হবেনা।" এমন অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও তৎপর হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। এজন্য গোয়েন্দা ইউনিটের আরও সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। "পুলিশ বাহিনীর কাজ হবে, এ ধরণের ঘটনা প্রতিরোধে, এলাকা ভিত্তিতে তৎপর হয়ে কাজ করা, খোঁজখবর রাখা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া।" "এজন্য ক্রিমিনাল ইন্টেলিজেন্সকে আরও কঠোর হতে হবে। কোথায় এ ধরণের ঘটনা হতে পারে বা হচ্ছে, কোথায় এ ধরণের অপরাধ প্রবণতা আছে, সেটাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।" আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। কিছুদিন আগে ভারতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম��� ছড়িয়ে পড়া গুজবের কারণে বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এরপর সরকারি বেসরকারিভাবে অনেক উদ্যোগ নেয়া হয়। সেইসঙ্গে সামাজিক মাধ্যমগুলো গুজব ঠেকাতে নানা ব্যবস্থা নেয়। এ ব্যাপারে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের ওপরেও জোর দেন তিনি। "উন্মত্ত জনতা যখন পিটিয়ে কাউকে মেরে ফেলে তখন সেই ঘটনার সাক্ষী হিসেবে কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়না। ফলে এক্ষেত্রে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হাতে নেয়াটাই জরুরি। আর সামাজিক সচেতনতা বিস্তার তারই একটা অংশ। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়ার একটা অংশ হিসেবে এই বিষয়টিও আসবে।" যেহেতু বাংলাদেশেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যাপক বিস্তার রয়েছে, সেক্ষেত্রে এগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রতিটা মানুষের আরও দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। "হঠাৎ একটা পোস্ট দেখেই উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়া অযৌক্তিক। এসব তথ্য দেয়ার আগে, সেটার সত্যতা যাচাই বাছাই করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভাল খারাপ দুটাই আছে। তাই এটাকে হুট করে বন্ধ করে দেয়াও সম্ভব না। এক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সচেতনতায় কাজ করতে পারে।" বাংলাদেশের ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে গতকাল তিনজন নিহত আর অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। হতাহতদের মধ্যে চারজনই নারী। আজকেও নওগাঁয় ছেলেধরা সন্দেহে ছয়জনকে গণপিটুনি দেয় উত্তেজিত জনতা। +text: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশে বিধান অনুযায়ী, নতুন সংসদ শুরুর ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে নির্বাচিত এমপিদের শপথ নিতে হয়। ফলে মঙ্গলবার ছিল শপথ নেওয়ার শেষ দিন। বিএনপি থেকে নির্বাচিত বাকি পাঁচজন গত কয়েকদিনে শপথ নিয়েছেন। তাদের চারজন সোমবার শপথ নেওয়ার পর বলেছেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের নির্দেশে তারা শপথ নিয়েছেন। বাকি ছিলেন মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের জাতীয় পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে একমাত্র তিনিই জিতেছিলেন। মঙ্গলবার রাতে স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী সংসদে জানান, মি. ইসলাম শপথ নেওয়ার কোনো আবেদন করেননি, বা শপথ নেওয়ার জন্য বাড়তি কোনো সময়ও চাননি। ফলে বিধি অনুযায়ী তিনি মি. ইসলামের আসনটি শূন্য ঘোষণা করছেন। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল বিবিসিকে বলেছেন, দলীয় কৌশলের অংশ হিসাবে তিনি শপথ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। "দলক��� গোছাতে, এগিয়ে নিতে এখন অনেক কাজ করতে হবে। আমাকে অনেক সময় দিতে হবে।" "সে কারণে সংসদের বাইরে থেকে আমি দলের জন্য কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এটা দলেরই একটি কৌশল...যারা শপথ নিয়েছেন তারা সংসদের ভেতরে কাজ করবেন, আমি বাইরে থেকে কাজ করবো," বলেন এই বিএনপি নেতা। শেষ দিনেও এমপি হিসাবে শপথ না নেওয়ায় বিরোধী দল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সংসদীয় আসন (বগুড়া ৬) শূন্য ঘোষণা করেছেন স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী। +text: মাহবুবুল আলম হানিফ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাঁর এই বক্তব্যের পর অনলাইনে নানা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন অনেকে। আসছে সাধারণ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা সেটি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সরকারের সমালোচনাকারীরা । মি. হানিফ বিবিসির কাছে ব্যাখ্যা করছিলেন, শেখ হাসিনা যতদিন জীবিত থাকবেন ততদিন তিনি ক্ষমতায় থাকবেন - এমন বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন? মি: হানিফের ব্যাখ্যা এ রকম, "বর্তমান বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সমপর্যায়ে বা তাঁর ধারে-কাছে অন্য কোন দলের বা যে কোন পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতৃত্ব নেই। ... এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা যে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন, আরও যদি এগিয়ে নিতে হয় শেখ হাসিনার বিকল্প কেউ নেই। "এই সার্বিক বিবেচনায় দেশের জনগণের প্রত্যাশা, জনগণ মনে করে শেখ হাসিনা যতদিন জীবিত থাকবে এবং যতদিন তাঁর কর্মক্ষমতা থাকবে ততদিন তিনি যদি দেশ পরিচালনা করেন, তাহলে বাংলাদেশ বহুদূর এগিয়ে যেতে পারবে। এ প্রত্যাশা থেকেই আমার এ বক্তব্য।" আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আরও দেখুন: "সব পুলিশ এমন হলে বদলে যেত বাংলাদেশ" চাকরির দায়ে যাদের রোজ পর্নোগ্রাফি দেখতে হয় স্বাস্থ্য ক্লিনিক থেকে বেরিয়ে আসছে শত শত সাপ মি. হানিফ যদিও বলেছেন, নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণ শেখ হাসিনাকে আবার বেছে নেবে, কিন্তু এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ এতোটা নিশ্চিত হচ্ছে কিভাবে? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সরকার বিরোধীরা। বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ধারণা মি. হানিফের এ বক্তব্য সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে সংশয় তৈরি করেছে। মি. চৌধুরী বলেন, "জনগণের ওপর যাদের আস্থা থাকবে না, গণতন্ত্রে যারা বিশ্বাস করবে না, তারা এ ধরনের মন্তব্য করতে পারে। এটা হচ্ছে একদলীয় মন-মানসিকতার প্র��িফলন। নীল নকশার মাধ্যমে জনগণকে প্রক্রিয়ার বাইরে রেখে আবারো ক্ষমতায় যাবার প্রক্রিয়া চলছে।" আওয়ামী লীগ নেতা মি: হানিফ বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ২০১৮ সাল নয়, ২০২৪ সালেও নয়। ২০২৯ সালের পর তারা ক্ষমতায় আসার কথা ভাবতে পারে। মি. হানিফকে উদ্ধৃত করে এ বক্তব্য সংবাদমাধ্যমে এসেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক মির্জা তাসলিমা সুলতানা মনে করেন, মি. হানিফের বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় উঠতেই পারে। তিনি বলেন, "তাদের হয়তো আকাঙ্ক্ষা থাকতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি (শেখ হাসিনা) বারবার নির্বাচিত হবেন, এমন নিশ্চিত করে তো বলা যায় না। " বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে মি. হানিফের বক্তব্য নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে নানা সংশয় তৈরি হওয়া স্বাভাবিক বলে মনে করেন অধ্যাপক সুলতানা। "তাঁরা হয়তো এ রকমই আকাঙ্ক্ষা করছেন। এ রকম করেই তাঁরা আগাচ্ছেন বলে মানুষের সন্দেহ হচ্ছে," বলেন অধ্যাপক সুলতানা। তবে এসব ধারণা খারিজ করে দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা মি. হানিফ বলেন, নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশের কোন কারণ নেই। নির্বাচনের বাইরে আর কোন বিকল্পের আওয়ামী লীগের চিন্তায় নেই বলে উল্লেখ করেন মি. হানিফ। অন্যদিকে বিরোধীদল বিএনপির অভিযোগ, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির মতো একটি সাজানো নির্বাচনের আয়োজন করছে ক্ষমতাসীনরা এবং মি: হানিফের বক্তব্যে সেটির ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে বলে তাদের ধারণা। শেখ হাসিনা যতদিন বেঁচে থাকবেন, ততদিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফকে উদ্ধৃত করে এমন বক্তব্য সংবাদ মাধ্যমে এসেছে। গত বুধবার ঢাকায় ছাত্রলীগের এক অনুষ্ঠানে মি. হানিফ এ মন্তব্য করেছেন। +text: শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সফরে এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় প্রসঙ্গক্রমে ভারতে ইলিশের অপ্রাপ্তির কথা তুলেছিলেন। প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তা চুক্তির দিকে ইঙ্গিত করে বলেছিলেন, "পানি আসলে মাছও যাবে।" প্রায় সাত বছর বন্ধ থাকার পর শারদীয় শুভেচ্ছা হিসেবে এবছর ভারতে পাঁচশ টন ইলিশ রপ্তানি করছে বাংলাদেশ। কিন্তু প্রত্যাশিত তিস্তার পানি আসেনি। বহুল আলোচিত তিস্তা চুক্তিটি কবে সেটাও অনিশ্চিত। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার দিনের সফরে ভারতে রয়েছেন। এই সফরকালে তিনটি ইস্যু বাংলাদেশে নানাভাবে আলোচনায় আছে: ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করায় বাংলাদেশের খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম শতক ছুঁয়েছে, বিশেষ আদেশে ভারতে ইলিশ রপ্তানি হচ্ছে আর ফারাক্কার সবগুলো গেট খুলে দেয়ায় আকস্মিক বন্যার শিকার হয়েছে বাংলাদেশ। ঢাকার কাঁচাবাজারে ইলিশ আর পেঁয়াজের দরদাম করতে গিয়ে ক্রেতা বিক্রেতাদের কথাবার্তায় শোনা গেল এসব ইস্যু। ভারতে পাঁচশ টন ইলিশ রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। মাছ-বাজারে বিক্রেতা যেমন বলছেন, বাংলাদেশ ইলিশ রপ্তানি না করলে দেশে দাম হয়তো আরেকটু কমতো, অপরদিকে ভারত রপ্তানি বন্ধ করেছে বলেই বাংলাদেশে এই লাগামহীন পেঁয়াজের দর। ভারতের কিছু পণ্য ছাড়া বাংলাদেশের চলে না, সেটা যেমন অনেকে বোঝেন আবার দরকষাকষিতে ভারতকে ছাড় দেয়া হচ্ছে এরকম ভাবনাও আছে জনমনে। পেঁয়াজ-বাজারে এক ক্রেতা ক্ষোভ জানিয়ে বলছিলেন, "ইন্ডিয়ায় পূজা হচ্ছে। এখানে পূজা হচ্ছে না? ৫শ টন ইলিশ পাঠিয়ে দিয়েছে, পেঁয়াজ বন্ধ করে দিয়েছে। ওদিকে তিস্তা বন্ধ করে দিয়েছে, ফারাক্কা বৃষ্টির দিনে খুলে দিবে, যখন দরকার তখন বন্ধ করে দেবে এটাই তো হচ্ছে নেগোসিয়েশন!" ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশে কোন দল ক্ষমতায় রয়েছে তার ওপরে ভারত বাংলাদেশ সম্পর্কের মাত্রায় ভিন্নতা দেখা যায়। অনেকের দৃষ্টিতে বাংলাদেশের পর পর দুটি বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনে জেতার পর ভারত আওয়ামী লীগ সরকারকে তুলনাবিহীন কূটনৈতিক সমর্থন দিয়ে গেছে। অনেকেই বলছেন, দুটি নির্বাচনের পর আন্তর্জাতিক যে কোন চাপ সৃষ্টির বিপরীতে ভারতের অবস্থান ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে। এর ফলে আওয়ামী লীগ দল হিসেবে উপকৃত হয়েছে, টানা ক্ষমতায় টিকে আছে কিন্তু দেশের স্বার্থে দরকষাকষিতে পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। আরো পড়তে পারেন: সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া যেভাবে বদলে দিচ্ছে জীবন ফারাক্কা: যে ফর্মুলায় পানি ভাগাভাগি করে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার যত সুফল এবং কুফল আমেনা মহসিন বলছেন, বাংলাদেশের চাওয়াগুলো বাংলাদেশ পাচ্ছে না। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক আমেনা মহসীন বিবিসি বাংলাকে বলেন, "যদি গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক চর্চা, সব দলগুলোকে ��িয়েই বলছি, তারা যদি শক্তিশালী-ভাবে করতে না পারে তাহলে এ সমস্ত হস্তক্ষেপ আমরা দেখবো।" ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের আলোচনায় দেনা পাওনার হিসেব কষেন অনেকেই। দু'দেশের মধ্যে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ভারতের রপ্তানি আয় তুলনামূলক বহুগুণ বেশি। তবে ২০১৯ সালেই প্রথমবার ভারত থেকে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। আগের বছরের তুলনায় এ প্রবৃদ্ধি প্রায় ৪৩ শতাংশ। যদিও ভারত থেকে আমদানি হয় এর থেকে প্রায় আটগুণ বেশি। বাংলাদেশের প্রাপ্তির তালিকায় ভারতে পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পায় বাংলাদেশ, কিন্তু সেখানেও আছে নানা বাধা। গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, দু'দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্ভাবনার অর্ধেকের মতো কাজে লাগানো যাচ্ছে। "শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা, লাইন অব ক্রেডিট এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও অনেকটা এগিয়েছে বাংলাদেশ কিন্তু একটা বিষয় মনে রাখতে হবে প্রতিশ্রুতি আর তার বাস্তবায়নের মধ্যে একটা সমন্বয় সাধন করতে হবে। সেদিক থেকে আমাদেরও প্রচেষ্টা এবং সক্ষমতাটা বাড়াতে হবে। নেগোসিয়েশনের জন্য যতটা সক্ষমতা প্রয়োজন সেখানে আমাদের একটা ঘাটতি আছে বলে আমি মনে করি।" এছাড়া প্রাপ্তির খাতায় বাংলাদেশ ভারত স্থল-সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন, বাংলাদেশিদের জন্য ভারতীয় ভিসা জটিলতা অনেকটা নিরসন হয়েছে এবং বেড়েছে আন্তদেশীয় যোগাযোগ। সড়ক, রেল, নৌ এবং আকাশপথে এখন ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে দু'দেশের মধ্যে এখনো বেশ কিছু ইস্যু অমীমাংসিত রয়ে গেছে। আর এই অমীমাংসিত ইস্যুগুলোতেই বাংলাদেশের অপ্রাপ্তি। ফাহমিদা খাতুন বলছেন, দু'দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্ভাবনার অর্ধেকের মতো কাজে লাগানো যাচ্ছে। এর মধ্যে প্রথমেই আসে বহুল আলোচিত তিস্তা চুক্তির বিষয়টি। তিস্তা নিয়ে এখনো কোনো সুরাহা হয়নি। এছাড়া প্রতিশ্রুতির পরেও সীমান্তে হত্যা এখনো বন্ধ হয়নি। এছাড়া গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা না পাওয়া ছাড়াও আছে অভিন্ন নদনদী থেকেও পানির সুষম বণ্টনের প্রশ্ন। আমেনা মহসীন বলেন, "ভারত মোটামুটি আমাদের কাছ থেকে যা চেয়েছিল বাংলাদেশ সবগুলোই পূর্ণ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের চাওয়াগুলো বাংলাদেশ পাচ্ছে না।" বাংলাদেশে যে বিপদে ভারতের সমর্থন প্রত্যাশা ��রে সেই রোহিঙ্গা ইস্যুতে কূটনৈতিক সমর্থনের অভাব দেখা যাচ্ছে। আমেনা মহসীন বলেন, "আমাদের মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে যে ভারত নিজস্ব স্বার্থ দেখেই চলছে এবং তাদের জাতীয় স্বার্থে তারা যেটা মনে করছে তারা তাই করছে। তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও তারা সেভাবে কার্ড প্লে করছে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও তারা সেভাবেই আছে।" রোহিঙ্গা সংকট, নাগরিক-পঞ্জী আর পানি বণ্টনের মতো ইস্যুকে সামনে রেখে নতুন মেয়াদে ক্ষমতাসীন শেখ হাসিনা এবং মোদি সরকারের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে দিল্লিতে। এই পটভূমিতে আসন্ন বৈঠক থেকে প্রাপ্তি কী হয় সেদিকেই নজর বাংলাদেশের মানুষের। আরো পড়তে পারেন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সেনাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে শিলিগুড়ি যাবে ভারতের ট্রেন ইলিশের বাড়ি আসলে কোথায়: চাঁদপুর না বরগুনায়? গর্ভের শিশুর হাতে টিকটিকির মতো পেশী থাকে ২০১২ সালের পর থেকে ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানি বন্ধ রেখেছে বাংলাদেশ। +text: ইদলিবের বাস্তুচ্যুত শরণার্থীদের একটি ক্যাম্পে শিশুসহ এক নারী ইদলিব কেন এত গুরুত্বপূর্ণ? বিদ্রোহীরা ইদলিবের নিয়ন্ত্রণ নেয় ২০১৫ সালে গত সাতবছরে যেই জিহাদি সংগঠন ও বিদ্রোহী দলগুলো সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে উৎখাত করার চেষ্টা করেছে, তাদের সবশেষ শক্ত ঘাঁটি এই ইদলিব। জাতিসংঘের বক্তব্য অনুযায়ী, ইদলিবের মোট জনসংখ্যা প্রায় ২৯ লাখ, যাদের মধ্যে ১০ লাখই শিশু। ইদলিবের বেসামরিক নাগরিকদের অর্ধেকের বেশীই এসেছে একসময় বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সিরিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে। যুদ্ধের সহিংসতা থেকে বাঁচতে সেসব জায়গা থেকে তারা হয় স্বেচ্ছায় পালিয়ে এসেছে, অথবা তাদের বাধ্য করা হয়েছে এলাকা ছাড়তে। ইদলিব প্রদেশের উত্তরে রয়েছে তুরস্কের সীমান্ত। আর দক্ষিণ-পশ্চিমের একটি অংশ জুড়ে রয়েছে আলেপ্পো থেকে হামা হয়ে রাজধানী দামেস্ক যাওয়ার মহাসড়ক। আর এর পূর্বদিকে ভূমধ্যসাগরের উপকূলীয় শহর লাটাকিয়া। ইদলিবের নিয়ন্ত্রণ যদি সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর হাতে চলে আসে তাহলে সিরিয়ায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কয়েকটি ক্ষুদ্র অঞ্চল বাদে আর কোথাও বিদ্রোহীদের ঘাঁটি থাকবে না। সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ বিভিন্ন সংগঠনের হাতে (সূত্র: আইএইচএস কনফ্লিক্ট মনিটর, ৩রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮) অর্থাৎ বিদ্রোহীরা কার্যত পরাজিত হবে। ইদলিব নিয়ন্ত্রণ করে কারা? ইদলিব প্রদেশটি কোনো একক নেতৃত্বের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় না। পরস্পরবিরোধী কয়েকটি দল - যাদের মোট আনুমানিক সৈন্যের সংখ্যা ৩০ হাজার - সম্মিলিতভাবে ইদলিব নিয়ন্ত্রণ করে। আল-কায়েদার সাথে যুক্ত জিহাদি জোট হায়াত তাহরির আল-শামস (এইচটিএস) এসব দলের মধ্যে প্রভাবশালী। হায়াত তাহরির আল-শামসের নেতারা যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষপাতী প্রাদেশিক রাজধানী ও সীমান্ত দিয়ে তুরস্কে প্রবেশের পথ বাব আল-হাওয়াসহ ইদলিবের প্রধান প্রধান এলাকাগুলো নিয়ন্ত্রণ করে এইচটিএস। এইচটিএস'এর আনুমানিক ১০ হাজার সৈন্য রয়েছে যাদের মধ্যে অনেকেই বিদেশী নাগরিক। জাতিসংঘ এটিকে জঙ্গী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সম্ভাব্য সেনা অভিযানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্টের সৈনিকরা তুরস্ক সমর্থিত ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (এনএলএফ) ইদলিবের দ্বিতীয় শক্তিশালী জোট। এইচটিএস'এর বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থান তৈরীর উদ্দেশ্যে কয়েকটি বিদ্রোহী দল এবছরই তৈরী করে এনএলএফ। ফ্রি সিরিয়ান আর্মি ব্যানারের অধীনে কার্যক্রম চালানো কয়েকটি ছোট দলসহ কট্টরপন্থী ইসলামিস্ট দল আহরার আল-শামস ও নূর আল-দিন আল-জিঙ্কি সংগঠনের সৈন্যরা এই জোটের সদস্য। সিরিয় সরকার এখন ইদলিব অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে কেন? সিরিয়া যুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ বর্তমানে প্রেসিডেন্ট আসাদের পক্ষে মোড় নিয়েছে। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সিরিয়ার মিত্র রাশিয়া পরিচালিত বিমান হামলা এবং সিরিয়ার আরেক মিত্র দেশ ইরানের হাজার হাজার সৈন্যের সমর্থনে অন্যান্য অঞ্চলের বিদ্রোহীদের দমন করতে সক্ষম হয়েছে সিরিয় সেনাবাহিনী। ৩০শে অগাস্ট পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ালিদ মুয়াল্লেম ঘোষণা করেন যে সরকারের প্রধান লক্ষ্য এখন ইদলিব 'স্বাধীন' করা। সিরিয় সেনাবাহিনী ও তাদের মিত্ররা সম্প্রতি দিরা ও কুনেইত্রা বিদ্রোহীদের দখলমুক্ত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, সিরিয় সরকার বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে 'সন্ধি চুক্তি'র মাধ্যমে ঐ অঞ্চলের আধিপত্য দখল করতে চায়। কিন্তু পাশাপাশি 'ত্যাগের পরোয়া না করে' এইচটিএস'কে পরাজিত করার দৃঢ় সঙ্কল্পও ব্যক্ত করেন তিনি। রাশিয়ার মতে, সিরিয় সরকারের পূর্ণ অধিকার রয়েছে 'নিজেদের এলাকায় জঙ্গীবাদের আশঙ্কা দমন' করার। ইদলিবে সংঘর্ষ কামনোর উদ্দেশ্যে করা পূর্ববর্তী এক চুক্তির শর্ত কতটা পালিত হচ্ছে, তা পর্যবেক্ষণ করার উদ্দেশ্যে ইদলিবে তুরস্কের সৈন্যও রয়েছে। তথ্য অনুযায়ী, ইদলিবে যেন বিদ্রোহী নিধনে সর্বাত্মক অভিযান না চালানো হয় সেবিষয়ে রাশিয়ার সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। এরই মধ্যে ৩০ লাখেরও বেশী সিরিয় শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়া তুরস্ক আশঙ্কা করছে ইদলিবে যুদ্ধ ছড়িয়ে পরলে নতুন করে তাদের সীমান্তে শরণার্থীদের ঢল নামবে। ইদলিবের বাসিন্দাদের কী হবে? পুরোদস্তুর সেনা অভিযান শুরু হলে প্রদেশটিতে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। সিরিয় সেনাবাহিনী ও রুশ বিমানবাহিনীর টানা হামলা ব্যাপক ক্ষতি করেছে ইদলিবের অবকাঠামোর ইদলিবে লক্ষ লক্ষ মানুষ বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছে। সেখানকার অধিকাংশ আশ্রয়কেন্দ্রই অতিরিক্ত ঘনবসতিপূর্ণ, যেখানে জীবনধারণের জন্য আবশ্যক সেবা নিশ্চিত করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। ইদলিবে অভিযান চালানো হলে 'মানবিক সঙ্কট এমন পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে যা এই যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পরিলক্ষিত হয় নি' বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী অভিযান শুরু হলে প্রায় ৮ লাখ মানুষ ঘরছাড়া হতে বাধ্য হবে এবং মানবিক সঙ্কটে ভুগতে থাকা মানুষের সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। বাস্তুচ্যুত মানুষের গন্তব্য পুরোপুরি অনিশ্চিত কারণ অনেক তুরস্ক আগেই নিজেদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। এরই মধ্যে ৩০ লাখ সিরিয় শরণার্থীকে আম্রয় দেয়া তুরস্ক তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে ইদলিবে আক্রমণ কি থামানো সম্ভব? রাশিয়া, ইরান ও তুরস্ককে এখনই যুদ্ধে না জড়ানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছেন সিরিয়ায় নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূত স্টাফান ডে মিস্তুরা। সঙ্কট নিরসনে দু'টি সমাধান প্রস্তাব করেছেন তিনি - রাজনৈতিক সমাধান অর্জনের লক্ষ্যে আলোচনায় অংশ নেয়া; অথবা 'বেসামরিক নাগরিকদের অস্থায়ীভাবে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে নির্ভরযোগ্য একটি চলাচলের পথ তৈরী করা।' সঙ্কট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে বিরোধী দলের সমর্থকরা তুরস্ক চায় সিরিয়া ও রাশিয়া যেন এই অভিযান স্থগিত করে। এই সঙ্কটের বিষয়ে আলোচনা করার উদ্দেশ্যে তিন দেশের শীর্ষ নেতারা শুক্রবার ইরানে বৈঠক করবেন। প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরুদ্ধে হওয়া বিদ্রোহকে সমর্থন করা যুক্তর��ষ্ট্র বলেছে সিরিয় সরকারের 'অতীত নৃশংসতা' ইঙ্গিত করে যে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার বিষয়ে তাদের বিশ্বাস করা যায় না। বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ দাবি করেছে তারা। সিরিয়ার শেষ বিদ্রোহী অধ্যূষিত অঞ্চল ইদলিবে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ও তাদের মিত্র রাশিয়া। এর মাধ্যমে সাত বছর ধরে চলতে থাকা সিরিয়া যুদ্ধ হয়তো চূড়ান্ত পর্বে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। +text: হাটে বিক্রির জন্য আসা এতো গরুর মধ্যে চিনে নেয়া জরুরি কোনটা সুস্থ। তবে হাটে বিক্রির জন্য আসা এতো গরুর মধ্যে অনেকগুলোই থাকতে পারে রোগাক্রান্ত অথবা ক্ষতিকর রাসায়নিক ও ওষুধযুক্ত। এসবের মধ্যে থেকে কোরবানির যোগ্য সুস্থ গরু চেনার উপায় কি? এ বিষয়ে জানতে বিবিসি কথা বলেছেন দক্ষ ক্রেতা ও একজন পশু বিশেষজ্ঞের সঙ্গে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল হাশেমের মতে, স্টেরয়েড দিয়ে মোটাতাজা করা গরু দেখতে আকর্ষণীয়, চকচকে ও হৃষ্টপুষ্ট দেখালেও আসলে সেগুলো মোটাতাজা হয় না। বরং এসব ক্ষতিকর উপাদান রান্নার পরেও মাংসে থেকে যাওয়ার সেটা খেলে রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। গরুর রোগবালাই: ভালো দাম পাওয়ার আশায় প্রতি বছর কোরবানির ঈদ সামনে রেখে একদল অসাধু ব্যবসায়ি কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই গরু মোটা করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ও রাসায়নিক মাত্রাতিরিক্ত প্রয়োগ করেন। এতে গরুর শরীরে অতিরিক্ত পানি জমতে শুরু করে। এতে গরুটির কিডনি, ফুসফুস, পাকস্থলী ও যকৃত নষ্ট হতে থাকে এবং গরুটি মারাত্মক অসুস্থ হয়ে যায়। আরও পড়তে পারেন: 'যারা গরু কাটবে, তাদের হাজারবার জবাই করব' ভারতে গরুর দুধের চেয়েও গোমূত্রের দাম বেশি গো-সেবার জন্য ভারতে গরু মহিষের হোস্টেল হচ্ছে প্রতি বছর কোরবানির ঈদ সামনে রেখে একদল অসাধু ব্যবসায়ি গরুকে ক্ষতিকর ওষুধ ও রাসায়নিক দিয়ে থাকে। এছাড়া অনেক গরু খুড়া রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এ রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চাইতে বেশি থাকে উল্লেখ করে অধ্যাপক আবুল হাশেম বলেন, সুস্থ গরুর দেহের তাপমাত্রা ১০২ থেকে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট হয়। এছাড়া খুড়া রোগাক্রান্ত গরুর ক্ষুর ও মুখে ঘা থাকতে পারে, আক্রান্ত গরু খুড়িয়ে হাঁটবে এবং খাবার খেতে চ���ইবেনা বলেও জানান তিনি। এছাড়া অনেক গরু কৃমিতে আক্রান্ত হতে পারে। এ ধরণের গরু বেশ বিবর্ণ ও হাড় জিরজিরে হয় বলে তিনি জানান। সুস্থ ও অসুস্থ গরু সনাক্তের উপায়: বিবিসি বাংলার সাথে আলাপকালে সুস্থ গরু সনাক্তের ব্যাপারে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশু বিশেষজ্ঞরা। তারা মূলত কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। ১. রাসায়নিক বা ওষুধ দেয়া গরুর মাংসপেশি থেকে শুরু শরীরের অন্য অঙ্গগুলো অস্বাভাবিকভাবে ফুলে থাকে। শরীরে পানি জমায় বিভিন্ন অংশে চাপ দিলে সেখানে গর্ত হয়ে দেবে যাবে, এবং স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে সময় নেবে। ৩. অতিরিক্ত ওজনের কারণে এ সব গরু চলাফেরা বা স্বাভাবিক নাড়াচাড়া করতে পারেনা। শান্ত থাকে। ৪. রাসায়নিকযুক্ত গরু ভীষণ ক্লান্ত থাকবে এবং ঝিমাবে। সুস্থ গরুর গতিবিধি চটপটে থাকে। পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বুঝে প্রতিক্রিয়া দেখায়। কান ও লেজ দিয়ে মশা মাছি তাড়ায়। সুস্থ গরুর নাকের উপরের অংশটা ভেজা বা বিন্দু বিন্দু ঘাম জমা থাকবে। ৫. রাসায়নিক বা ওষুধ খাওয়ানো গরুর শরীরের অঙ্গগুলো নষ্ট হতে শুরু করায় এগুলো শ্বাস প্রশ্বাস দ্রুত হয়। মনে হবে যেন হাঁপাচ্ছে। ৬. অতিরিক্ত স্টেরয়েড দেয়া গরুর মুখ থেকে প্রতিনিয়ত লালা ঝরবে। কিছু খেতে চাইবে না। সুস্থ গরুর মুখের সামনে খাবার ধরলে সেটা টেনে খাবে। না হলে জাবর কাটবে। ৭. সুস্থ গরুর নাকের উপরের অংশটা ভেজা বা বিন্দু বিন্দু ঘাম জমা থাকবে। অন্যদিকে অসুস্থ গরুর নাক থাকবে শুকনা। ৮. সুস্থ গরুর শরীরের রঙ উজ্জ্বল থাকবে। গরুর পিঠের কুজ মোটা, টানটান ও দাগমুক্ত হবে। ৯. সুস্থ গরুর রানের মাংস শক্ত থাকবে। যেখানে রাসায়নিক দেয়া গরুর পা হবে নরম থলথলে। ১০. গরুর শরীরে হাত দিয়ে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মনে হলে বুঝতে হবে গরুটি অসুস্থ। ১১. সুস্থ গরুর চামড়ার ওপর দিয়ে কয়েকটা পাঁজরের হাড় বোঝা যাবে। কোরবানির উপযুক্ত পশু: কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করার গরুগুলো অনেক সময় কেনার পর কোরবানির অযোগ্য হয়ে পড়তে পারে। এক্ষেত্রে দেশি গরু কেনার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। কেননা চাইলেও দেশ গরুরি বেশি মোটাতাজা করা সম্ভব না। কোরবানির জন্য দেশি গরু কেনার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কোরবানির জন্য কোন পশুটি উপযুক্ত তা জেনে নেয়া খুবই জরুরি। ১. গরুর বয়স ন্যূনতম দ���ই বছর হলেই এটা কোরবানির জন্য উপযুক্ত হবে। এক্ষেত্রে গরুর দাঁত দেখে বয়স যাচাই করে নিতে হবে। গরুর নীচের পাটিতে যদি দুধ দাঁতের পাশাপাশি সামনে অন্তত দুটি কোদালের মতো স্থায়ী দাঁত থাকে তাহলে বুঝতে হবে গরুটি কোরবানির উপযুক্ত হয়েছে। ২. গরুটিকে সম্পূর্ণ সুস্থ হতে হবে। এজন্য শিং ভাঙ্গা লেজ কাটা কিংবা মুখ, জিহ্বা, শরীর, পা, ক্ষুর, গোড়ালিতে কোন ক্ষত আছে কিনা দেখে নিতে হবে। ৩. গাভী কোরবানির দেয়া গেলেও তার আগে অবশ্যই নিশ্চিত হবে যে গাভীটি গর্ভবতী কিনা। গর্ভবতী গাভী কোন অবস্থাতেই কোরবানি দেয়া যাবেনা। সাধারণত গর্ভবতী গাভীর পেট ও ওলান স্ফীত থাকে। দক্ষ পশু ক্রেতার পরামর্শ: দক্ষ পশু ক্রেতারা দিনের আলো থাকতে থাকতেই গরু কেনার পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের মতে রাতের বেলা গরুর এতোগুলো বিষয় ঠিকঠাক যাচাই করা সম্ভব নাও হতে পারে। এ ব্যাপারে লালবাগের বাসিন্দা ও খামার ব্যবসায়ী নাজিমুদ্দিন নিপু বলেন, মোটা গরুর পরিবর্তে সুস্থ গরু কোরবানি দেয়ার ব্যাপারে আগ্রহী হতে হবে। দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ উল আযহা। এ উপলক্ষে এরই মধ্যে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। পুরোদমে চলছে বেচাকেনা। +text: ''আমার ধারণা, আগামী দুই তিন মাসের মধ্যেই ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার সামাজিক মাধ্যমে ফিরে আসবেন, তবে এবার তার নিজস্ব প্লাটফর্ম নিয়ে,'' জ্যাসন মিলার ফক্স নিউজকে বলেছেন। তিনি বলেছেন, মি. ট্রাম্পের এই প্লাটফর্ম সামাজিক মাধ্যমে 'হটেস্ট টিকেট' বা অত্যন্ত জনপ্রিয় হবে। সেটি পুরো পরিস্থিতি পাল্টে দেবে বলে তিনি মনে করেন। জানুয়ারি মাসে ওয়াশিংটন ডিসিতে ভয়াবহ সহিংসতার পর থেকে মি. ট্রাম্পের টুইটার এবং ফেসবুক অ্যাকাউন্ট স্থগিত করেছে প্রতিষ্ঠান দুইটি। ছয়ই জানুয়ারি ট্রাম্প সমর্থকদের ওই হামলায় পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন। এর কয়েকদিন পরে, টুইটার ঘোষণা করে, সহিংসতায় আরও উস্কানি দেয়ার আশঙ্কায় মি. ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট- 'অ্যাট রিয়েল ডোনাল্ড ট্রাম্প' স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রচলিত গণমাধ্যম এড়িয়ে সরাসরি সমর্থকদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য টুইটার ব্যবহার করে আসছিলেন মি. ট্রাম্প। টুইটারে প্রায় ৯ কোটি অনুসারী ছিল সাবেক এই প্রেসিডেন্টের। আরও পড়ুন: রাজনৈতিক ভবিষ্যতের বিষয়ে যা বললেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রাম্প সমর্থকরা যেভাবে ঢুকে পড়ে ক্যাপিটল ভবনে আমেরিকার কোন প্রেসিডেন্ট সবচেয়ে বেশি মিথ্যাচারী ছিলেন ক্যাপিটল হিল হামলা: 'যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলো দাঙ্গাকারীরা' রক্ষণশীলদের অনেকেই এখনও ডোনাল্ড ট্রাম্পের কড়া সমর্থক। কোন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প? এটা আসলে এখনো জানা যায়নি। মি. মিলার এই ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাননি। তিনি শুধুমাত্র বলেছেন, ''প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কি করবেন, সেটা সবাইকে দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।'' ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই উপদেষ্টা বলেছেন, মি. ট্রাম্প তার এই নতুন প্রকল্প নিয়ে এর মধ্যেই ফ্লোরিডায় তার রিসোর্টে বেশ কয়েকটি টিমের সঙ্গে 'বড় ধরনের' কয়েকটি বৈঠক করেছেন। বেশ কয়েকটি কোম্পানি সাবেক এই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলে মি. মিলার জানিয়েছেন। ''নতুন এই প্ল্যাটফর্ম হবে বিশাল বড়,'' তিনি বলছেন। কারণ তার মতে, মি. ট্রাম্প ''অসংখ্য মানুষকে সেখানে টেনে নিয়ে আসতে পারবেন। কেন ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা হয়েছিল? ক্যাপিটল হিলে হামলা চালাতে সমর্থকদের আহবান জানানোর পর জানুয়ারি মাসে প্রথমে ১২ ঘণ্টার জন্য তার টুইটার অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা হয়। গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের বিজয়ের স্বীকৃতি দিতে যখন কংগ্রেসের অধিবেশন চলছিল, সেই সময় হাজার হাজার সমর্থক সেই ভবনে হামলা করে। টুইটার তখন মি. ট্রাম্পকে সতর্ক করে দিয়েছিল যে, তাদের নীতি ভঙ্গ করলে তার একাউন্ট স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হবে। অ্যাকাউন্ট ফিরে পাওয়ার পর দুইটি টুইট করেন মি. ট্রাম্প। এরপর টুইটার ঘোষণা দেয় যে, তার এসব টুইট তাদের সহিংসতা বিরোধী নীতির লঙ্ঘন। মি. ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট স্থগিত করেছে ফেসবুক, গেমিং প্ল্যাটফর্ম টুইচ এবং স্ন্যাপচ্যাট। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: কীভাবে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল সার্চ ইঞ্জিন গুগলের মাগুরায় বেনামী চিঠিতে 'ইসলামের দাওয়াত', কী ব্যবস্থা জানতে চেয়েছে আদালত অনলাইন ব্যবসায় ট্রেড লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা নিয়ে শংকা বিমান ভ্রমণে করোনাভাইরাসের টিকা বাধ্যতামূলক করতে চাপ যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে নিজের একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করে আবার সক্রিয় হবেন বলে তার একজন উপদেষ্টা জানিয়েছেন। +text: নতুন ছবি রংবাজ এর মহরত অনুষ্ঠানে যোগ দেন শাকিব খান ও নায়িকা বুবলি। এরপর ফেসবুকে এই ছবি পোস্ট করেন শাকিব খান। কারণ কিছুদিন ধরে তাকে ও শাকিব খানকে ঘিরে একধরনের গুঞ্জন তৈরি হয়েছে বলে সিনেমা অঙ্গনের লোকজন বলছেন। এবার একদিনের ব্যবধানে দুজনের হাসপাতালে যাওয়ার খবরটিকে কেউ কেউ মনে করছেন কাকতালীয়। আবার কেউ কেউ একে বলছেন 'ফিল্মি পলিটিক্স'। এটাকে এক ধরনের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা হিসেবেও দেখছেন অনেকেই। চিত্রনায়ক শাকিব খান বৃহস্পতিবার দুপুরে ল্যাব এইড হাসপাতালে যান বলে সেখানকার চিকিৎসকরা জানান। সেখানে তাকে দেখতে যান অপু বিশ্বাসও। এরপর শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে অপু ও শাকিব দেখা করেন এবং সাংবাদিকদের সাথে আলাপও করেন। এর আগে নতুন ছবি রংবাজ এর মহরত অনুষ্ঠানে যোগ দেন শাকিব খান ও নায়িকা বুবলি। আরও পড়ুন: উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ কেন? হেফাজত সমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগে অস্বস্তি, টিপ্পনী কাশ্মীরি যুবককে 'মানবঢাল' বানালো ভারতীয় সেনারা টেলিভিশনে লাইভ অনুষ্ঠানে অপু বিশ্বাস মহরত অনুষ্ঠান শেষে বুবলি বেসরকারি একটি হাসপাতালে যান । রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের কর্মকর্তারা বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, গতকাল রাতে শবনম বুবলি সেখানে চিকিৎসা নিতে যান । মূলত জ্বর এবং গ্যাস্ট্রিক জনিত সমস্যার কারণে তিনি হাসপাতালে যান বলে তারা জানিয়েছেন। রাত পৌনে দশটার দিকে বুবলি হাসপাতালে যান এবং রাত তিনটার পর হাসপাতাল ছেড়ে যান বলে সেখানকার কর্মকর্তারা জানিয়েছে। এর ঠিক একদিন আগে বৃহস্পতিবার হাসপাতালে যান শাকিব খান। পরে শাকিবের ফেসবুক পেজে ভক্তদের উদ্দেশ্যে লেখা হয়, "তিনি সুস্থ আছেন, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তাঁর চেক আপ করেছেন। কিছু টেস্ট দিয়েছেন, মূলত খাবারের অনিয়মের জন্য এসিডিটি প্রবলেম বলছেন তার।। এখন তিনি বিশ্রামে আছেন!!" বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে বিনোদন জগত নিয়ে সাংবাদিকতা করে আসছেন দাউদ হোসাইন রনি। তিনি মনে করেন, এখানে অসুস্থতার চেয়েও হয়তো বড় যে ব্যাপারটি সেটি হচ্ছে সহানুভূতি পাওয়া। কারণ সিনেমা জগতে অনেক ধরনের রাজনীতি থাকে। সমর্থকদের সহানুভূতি পাওয়ার জন্য অনেককিছু করেন তারকারা"। ফলে এটা 'লোক দেখানো' কি-না সে প্রশ্নও উঠছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সাংবাদিক রনি বলেন, "শাকিবের হার্ট এবং পেটের সমস্যার কথা জানি দীর্ঘদিন ধরেই। কিন্তু এর আগে অসু��্থ হলেও তিনি সেটা গোপন রেখেছেন। জনসমক্ষে আসতে দেননি বিষয়টি"। "এবার তিনি সচেতন ভাবেই তার অসুস্থতার বিষয়টি এবং হাসপাতালে যাওয়ার বিষয়টি সামনে এনেছেন। তাহলে কি বোঝা যায়?" বলেন দাউদ হোসাইন রনি। শাকিব খান ও শবনম বুবলি এদিকে গতকাল অপু বিশ্বাস ও শাকিব খান রাজধানীর একটি হোটেলে দেখা করার পর শিশুসন্তান কোলে নিয়ে তাদের তোলা একটি ছবি "ফ্যামিলি টাইম" ক্যাপশন দিয়ে ফেসবুকে আপলোড করেন নায়িকা অপু। এর আগে নায়িকা বুবলিও শাকিব খানের সাথে নিজের ছবিতে এমন ক্যাপশন সহকারে ফেসবুকে দিলে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অপু বিশ্বাস। সম্প্রতি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল নিউজ ২৪- এ সরাসরি সাক্ষাতকারে অপু বিশ্বাস জানান শাকিব খানের সাথে তার বিয়ে হয়েছে এবং তাদের একটি ছেলেও আছে। ছেলের নাম আব্রাহাম খান জয়। তিনি জানান, শাকিবকে বিয়ে করে তিনি নিজের নাম পাল্টে রাখেন অপু ইসলাম খান। ২০০৮ সালের ১৮ই এপ্রিল তাঁদের বিয়ে হয়। এ ঘটনার পর থেকে আলোচনা শুরু হয় বুবলী ও শাকিব খানের সম্পর্ক নিয়েও। বাংলাদেশে চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস হঠাৎ করেই শাকিব খানের সাথে তার বিয়ে এবং তাদের সন্তান জন্মানোর খবর প্রকাশের পর থেকেই আলোচনায় ছিলেন বুবলিও। +text: পঞ্চগড় কারাগার গত ২৬শে এপ্রিল পঞ্চগড়ের ওই কারাগারে অগ্নিদগ্ধ হন পলাশ কুমার রায়, যিনি পেশায় একজন আইনজীবী ছিলেন। অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর ৩০শে এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। কারাগারের মতো একটি সুরক্ষিত স্থানে একজন বন্দীর গায়ে আগুন লাগার ঘটনা এই মধ্যে বেশ আলোড়ন তুলেছে। এই ঘটনায় সায়েদুল হক সুমন নামের একজন আইনজীবী আদালতে বাদী হয়ে একটি রিট দায়ের করেন হাইকোর্টে। কারাগারের ভেতরে একজন মানুষের শরীরে আগুন লাগার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কীভাবে পৌঁছালো এবং কারাগারে অবস্থানরত ব্যক্তির নিরাপত্তা দিতে কারা কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা কেন অবৈধ বলে ঘোষণা করা হবে না - রিটে মূলত সেই প্রশ্নই তুলেছেন সায়েদুল হক সুমন। ওই রিটের প্রেক্ষিতে ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কেন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন পলাশ রায়? পলাশ রায়ের ভাই প্রবীর কুমার রায় বিবিসি বাংলাকে জানান, প্রধানমন্ত্রীকে কটুক্তি করার অভিযোগে ২৬শে মার্চ পলাশ রায়কে আটক করে জেল হাজতে পাঠায় পঞ্চগড় পুলিশ। তবে প্রধানমন্ত্রীকে কটুক্তি করার মামলাটি সাজানো ছিল বলে দাবি করেন প্রবীর কুমার রায়। তিনি বলেন, "আমার ভাই একটি রাসায়নিক তৈরিকারী প্রতিষ্ঠানের আইনি কর্মকর্তা ছিলেন। ২০১৬ সালে ঐ প্রতিষ্ঠান তার নামে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে।" তিনি আরও জানান, "এ বছরের ২৫শে মার্চ ওই ঘটনার প্রতিবাদে সে (পলাশ রায়) একটি মানববন্ধন করে এবং প্রধানমন্ত্রীর বরাবর একটি স্মারকলিপি জমা দেয়ে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসকের অফিসে।" এর পরদিনই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কটুক্তি করার অভিযোগে তাকে আটক করে জেল হাজতে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান প্রবীর রায়। আরো পড়তে পারেন: অবশেষে পাকিস্তান ছাড়লেন আসিয়া বিবি লাহোরে সুফি মাজারের বাইরে বিস্ফোরণ, নিহত ৫ 'রমজান' কীভাবে 'রামাদান' হয়ে উঠেছে ভারতে পঞ্চগড় কারাগার পরিবার যেভাবে জানতে পারলো অগ্নিকান্ডের ঘটনা পলাশ কুমার রায়ের মা মীরা রানী রায় বিবিসিকে জানান, পলাশ রায়ের গায়ে আগুন লাগার ঘটনা ঘটার দিন জেল হাজতে পলাশের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন তিনি। তিনি বলেন, "২৬ তারিখ জেল হাজতে দেখা করতে গিয়ে আমি দেখি সেখান থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স বেরিয়ে যাচ্ছে। পরে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি যে পলাশের গায়ে আগুন লেগেছে, তাই তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।" এরপর পঞ্চগড়ের ওই হাসপাতালে গেলেও পলাশকে দেখতে অনুমতি দেয়া হয়নি তাকে, বলছেন তিনি। মীরা রায় আরও অভিযোগ করে বলেন, "পঞ্চগড়ের হাসপাতাল থেকে আমার ছেলেকে রংপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। আমি ভেবেছিলাম তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, কিন্তু আমি রংপুরে গিয়ে দেখতে পাই তাকে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে একটি বেডে ফেলে রেখেছে।" তবে রংপুরের কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায় বিবিসি বাংলাকে বলেন, পলাশ রায়কে নিয়ম অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। মিজ রায় বলেন, "তাকে (পলাশ রায়) যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এখানে সমন্বয়ের কোনো অভাব ছিল না এবং কারো কোনো গাফিলতিও ছিল না।" পলাশ রায়ের শেষ জবানবন্দি হাইকোর্টে যিনি রিট করেছেন, সেই আইনজীবী সায়েদুল হক সুমন জানিয়েছেন যে অগ্নিদগ্ধ হওয়া পলাশ রায়ের একটি জবানবন্দি তার মৃত্যুর আগে হাসপাতালে রেকর্ড করা হয়েছিল এবং ওই জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে ঘটনাটিকে হত্যা বলে সন্দেহ করে আদালতে আবেদনটি করা হয়েছে। ওই জবানবন্দিতে দেয়া পলাশ রায়ের বক্তব্য উদ্ধৃত করে সায়েদুল হক সুমন বলেন যে জেল হাজতে দু'জন ব্যক্তি তার গায়ে কোনো তরল পদার্থ ছিটিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। পলাশের মা মীরা রায় বিবিসিকে বলেন, ২৬শে এপ্রিল গায়ে আগুন লাগার আগের দু'দিন তিনি যখন পলাশের সাথে দেখা করতে যান, তখন পলাশ তাকে জানায় যে ঢাকা থেকে তিনজন ব্যক্তি তার সাথে দেখা করেছে এবং তাকে মানসিকভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। তবে কথিত ওই তিন ব্যক্তি কারা বা তাকে কেন চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছিল, সে ব্যাপারে পরিবারের সদস্যরা ঠিক নিশ্চিত নন। বিচার বিভাগীয় তদন্ত আইনজীবী সায়েদুল হক সুমন বলেছেন যে হাইকোর্ট পঞ্চগড়ের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছে। এই কমিটিতে থাকবেন পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক, জেল সুপার এবং পুলিশ সুপার। একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কমিটিকে সহায়তা করবেন। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে প্রতিবেদন দিতে কমিটিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। পঞ্চগড়ের জেলা কারাগারে পলাশ কুমার রায় নামের এক ব্যক্তির গায়ে আগুন লাগার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। +text: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু ঠিক কোন নীতিমালার ভিত্তিতে কে কখন এরকম অনুদান পাচ্ছেন, এ নিয়ে বিতর্কও কম নয়। খ্যাতনামা সঙ্গীত শিল্পী এন্ড্রু কিশোরকে প্রধানমন্ত্রী গতকাল (রোববার) তার ত্রাণ তহবিল থেকে অনুদান দেয়ার পর আবারও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এনিয়ে জোর বিতর্ক চলছে। এন্ড্রু কিশোরকে চিকিৎসার জন্য ১০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যাদের আর্থিক সামর্থ নেই, তাদেরকেই প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ বা বিশেষ তহবিল থেকে এমন অনুদান দেয়া হয়। কিন্তু প্রথম সারির একজন পেশাদার শিল্পীকে এমন অনুদান কেন দেওয়া হলো - তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান নূর বলেছেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় অনেক সময় শিল্পীদের আবেদনের পরে সেটা যাচাই করে প্রধানমন্ত্রীর বিবেচনার জন্য তার কাছে পাঠিয়ে থাকে। তবে শিল্পীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় কোন আবেদন ছাড়াই প্রধানমন্ত্রী নিজে থেকে খোঁজ-খবর নিয়ে অনুদান দিয়ে থাকেন বলে তিনি উল্ল���খ করেন। "শিল্পীদের শুধু নয়, অনেক ধরনের মানুষকেই, যারা সংকটে বা সমস্যায় পড়েন, তাদের এই সহায়তা দেয়া হয়। সেখানে শিল্পী, লেখক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা এবং প্রবীণ রাজনীতিকরাসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এই সহায়তা পেয়ে থাকেন।" "অনেক সময় প্রধানমন্ত্রী পত্রপত্রিকায় লক্ষ্য করেন যে কেউ হয়তো অসুস্থ। সে শিল্পী হয়তো তাঁর কাছে আবেদনই করেননি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নিজেই কর্মকর্তাদের মাধ্যমে খবর দিয়ে ডেকে নিয়ে এসে অনেক সময় তাকে সহায়তা দিয়েছেন। শিল্পীদের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা বেশি ঘটেছে। আবার কেউ কেউ হয়তো আবেদন করেন, তখন সেটা যাচাই করে সহায়তা দেয়া হয়," বলেন আসাদুজ্জামান নূর। এর আগে চলচ্চিত্র অভিনেতা আহমেদ শরীফকে চিকিৎসার জন্য ৩৫ লাখ টাকা সহায়তা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তখনও সামাজিক মাধ্যমে অনেকে নানান প্রশ্ন তুলেছিলেন। বিভিন্ন সময়ই এই অর্থ সহায়তা যাদের দেয়া হয়েছে, তাদের অনেকে দুস্থ কিনা, এমন প্রশ্ন উঠেছে। এন্ড্রু কিশোর আদৌ সহায়তা চেয়েছেন কিনা জানা যায়নি। কোন নীতিমালার ভিত্তিতে কে কখন প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে অনুদান পাচ্ছেন সেটা নিয়ে প্রায়শই বিতর্ক হয়। (প্রতীকী ছবি) আরো পড়তে পারেন: চাকরির বয়স না বাড়ানোর পেছনে শেখ হাসিনার যুক্তি নিরাপদ সড়ক আন্দোলন নিয়ে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিল হয়ে গেছে, আর হা-হুতাশ নয়: শেখ হাসিনা টিআইবি'র ট্রাস্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে অর্থ সহায়তা দেয়ার জন্য মনোনীতদের যাচাই করার প্রক্রিয়া বা নীতিমালা সবাই জানতে পারে না, সেজন্য অনেক সময় বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি বলেন, "আমরা বাইরে থেকে যেটা দেখছি, যারা এই তালিকা ঠিক করে দিচ্ছেন, তাদের কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ যাদের আছে, তারা পাচ্ছেন। খুবই মাইক্রোস্কোপিক ঘটনা ছাড়া আমরা দেখি না যে যাদের এই সহায়তা পাওয়া কথা, তারা পাচ্ছেন। মানে কোন ক্রাইটেরিয়াতে এই সহায়তা দেয়া হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তোলা যায় বলেই হয়তো বিতর্ক উঠছে।" অনেক সময় রাজনৈতিক পরিচয়ও বিবেচনায় আসে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েই জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনু যখন তথ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাংবাদিকদের সংগঠনগুলোর এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের তালিকা করে তাদের অর্থ সহায়তা দেয়া হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ তহবিল থেকে। সেসময়ও যেসব সাংবাদিক সহায়তা নিয়েছিলেন, তাদের অনেকের অর্থিক সামর্থ্যের বিষয়ে অনেক কথা উঠেছিল। হাসানুল ইনু বলেছেন, অনেক যাচাই বাছাই করেই প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে অর্থ সহায়তা দেয়া হয়। "সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে আমরা দুই লাখ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা দিতে পারি। এর বেশি প্রয়োজন হলে, সেটা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ তহবিলে পাঠানো হয়। সাংবাদিক সমিতির নেতারা এবং তথ্য মন্ত্রণালয় সুপারিশ করে। সুতরাং যাচাই বাছাই করেই প্রকৃত সাংবাদিকের জন্য এটা পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রী তা বিবেচনা করেন। ফলে এখানে প্রশ্ন তোলার বা বিতর্ক করার কোন সুযোগ নেই।" প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে, তারা এটুকুই বলেছেন যে, একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে স্বচ্ছ্বতার সাথে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে অর্থ সহায়তা দেয়া হয়। আর এই তহবিলও গঠিত হয় ব্যাংক, আর্থিক বা ব্যবসায়িকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির সাহায্য থেকে। আরো পড়তে পারেন: যে লজ্জার রেকর্ডে নাম লেখালো বাংলাদেশ ক্রিকেট দলিল নিবন্ধনে সীমাহীন অনিয়ম দুর্নীতি: টিআইবি এসি দুর্ঘটনা এড়াতে যেসব তথ্য জানা জরুরি বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে দুঃস্থ লেখক-সাংবাদিক-শিল্পীদের সুচিকিৎসার জন্য অনুদান দেয়ার খবর প্রায়শই দেখা যায়। +text: মিজানুর রহমান আজাহারীর এক মাহফিলে এসে পরিবারটি ইসলামে দীক্ষা নেয় গত ২৪শে জানুয়ারী লক্ষীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার পানপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছিল। সেখানে একই পরিবারের মোট ১২ জন সদস্য এক সঙ্গে ইসলামে দীক্ষা নেয়ার পর এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। আলোচিত এই পরিবারটি এসেছিল ভারত থেকে। সেখানে হিন্দু ধর্মের অনুসারী ছিলেন তারা। বাংলাদেশের পুলিশ এই পরিবারের ১২ জনকেই আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তবে পুলিশ বলছে, ভারতীয় নাগরিক হিসেবে যে ভিসা নিয়ে তারা বাংলাদেশে ঢুকেছিলেন তার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে, সে কারণেই তাদের ভারতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। লক্ষীপুরে কী ঘটেছিল: লক্ষীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার পানপাড়া গ্রামে ২৪শে জানুয়ারির মাহফিলটির আয়োজন করে স্থানীয় মসজিদ কমিটি। সেখানে ওয়াজ করেন মিজানুর রহমান আজহারী। তিনি বাংলাদেশে এখন বেশ জনপ্রিয় একজন ধর্মীয় বক্তা। একই সঙ্গে তাকে নিয়ে বিতর্কও আছে। তার মাহফিলে প্রচুর লোকসমাগম হয়। সেদিন তার উপস্থিতিতে একটি পরিবারের মোট ১২ জন সদস্য ইসলামে দীক্ষা নেন। এর আগেও মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিলে ধর্মান্তকরণের ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে বাংলাদেশে সোশ্যাল মিডিয়ায় তার পক্ষে-বিপক্ষে অনেক বিতর্ক চলছে। তবে লক্ষীপুরের এই ঘটনাটির ব্যাপারে পুলিশ কিছু অনুসন্ধান চালিয়ে বলছে, এই পরিবারটি বাংলাদেশি নয়, এরা সবাই এসেছে ভারত থেকে। তবে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজকরা বলছেন, এরা যে ভারতীয় নাগরিক, সেটি তাদের জানা ছিল না। পরিবারটির পরিচয় কী? ১২ সদস্যের ধর্মান্তরিত পরিবারটির প্রধান হচ্ছেন মনির হোসেন। এর আগে ভারতে তিনি পরিচিত ছিলেন শংকর অধিকারী নামে। পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের অগাষ্ট মাসে দুই মাসের ভিসা নিয়ে তারা বাংলাদেশে এসেছিল এবং ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তারা অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান করছিল। বাংলাদেশের ধর্মীয় সমাবেশগুলোতে প্রচুর লোকসমাগম হয়ে থাকে লক্ষীপুর জেলার পুলিশ সুপার এ এইচ এম কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, ধর্মান্তরের ঘটনার পর তদন্ত করে পরিবারটির কর্তাব্যক্তি সম্পর্কে তারা বিভিন্ন তথ্য জানতে পারেন। "এই পরিবারটির কর্তা বাংলাদেশ জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। তার নাম মনির হোসেন। তাদের পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, উনি ছোটবেলায় হারিয়ে যান। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে উনি কিভাবে ভারতে গেছেন, তা তার জানা নাই। ভারতে হিন্দু পরিবারে বড় হয়েছেন এবং হিন্দু নারী বিয়ে করে সংসার করছিলেন। তিনি ভারতে নাম নিয়েছিলেন শংকর অধিকারী।" পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছেন, "এই ব্যক্তির স্ত্রী দু'জন এবং দুই ঘরে সন্তান সংখ্যা আটজন। একজন নাতিও আছেন। তাদের সবাইকে আমরা পাই ভারতীয় পাসপোর্টসহ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে এরা বাংলাদেশে এসেছিলেন। সেদিক দিয়েই তারা আবার ফেরত গেছেন।" অন্যান্য খবর: আড়ং কর্মীর মোবাইলে চেঞ্জিং রুমের শতাধিক ভিডিও 'বেইমান'দের গুলি করে মারার নিদান বিজেপি মন্ত্রীর প্রকল্প বাস্তবায়নে বছরের পর বছর সময় লাগে যে দেশে মনির হোসেন বা শংকর অধিকারীর মা ফাতেমা বেগমের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছে বিবিসি বাংলা। লক্ষীপুরের রামগঞ্জের চন্ডীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তিনি। ফাতেমা বেগম বলছিলেন, তার ছেলে হারিয়ে যাওয়ার ২৫ বছর পর তা���ের মধ্যে যোগাযোগ হয় গত বছরের জুলাই মাসে। ঘটনাটি ছিল নাটকীয়। সে সময় শুধু গ্রামের নামে বা ঠিকানায় একটি চিঠি পাঠিয়েছিল মোবাইল নাম্বার দিয়ে। একজন পোস্টমাস্টারের চেষ্টায় সেই নাম্বারের মাধ্যমে তাদের যোগাযোগ হয়। এরপর তার ছেলে পরিবার নিয়ে গত বছরের অগাষ্টে দেশে আসে। ফাতেমা বেগম জানিয়েছেন, তার ছেলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে বাংলাদেশেই থাকতে চেয়েছিল। তবে তিনি বলেছেন, মাহফিলে তার ছেলে কিভাবে গিয়ে ধর্মান্তরিত হয়েছে তা তার জানা নাই। তিনি আরও বলেছেন, "আমার ছেলে দুই বউসহ সন্তানদের নিয়ে আসার পর তারা হিন্দু হওয়ায় আমি তাদের আমার সাথে না থেকে অন্য এলাকায় থাকতে বলেছিলাম। তারা কেরানীগঞ্জে বসবাস করছিল ছয় সাত মাস ধরে। তারা মক্তবে গিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিল এবং এরপর তাদের ঐ মাহফিলে নিয়া কালিমা পড়ায়।" মিজানুর রহমান আজহারী: তাকে নিয়ে বিতর্ক চলছে বাংলাদেশে ধর্মান্তকরণ নিয়ে বিতর্ক পরিবারটিকে ধর্মান্তরিত করার ক্ষেত্রে জোর করা হয়েছে কিনা বা এটি সাজানো ঘটনা ছিল কিনা--এসব নানা প্রশ্ন অনেকে তুলেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে মাহফিলে আয়োজকদের অন্যতম একজন মোহাম্মদউল্লাহ দাবি করেছেন, পরিবারটিকে ধর্মান্তরিত করার ক্ষেত্রে তারা জোর করেন নি। তাদের নাগরিকত্বের ব্যাপারেও জানা ছিল না বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। "পরিবারটির কর্তা মাহফিলের একদিন আগে আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছিল। এরপর মাহফিলের দিন তারা এফিডেভিট এর কপি সহ আইনজীবী নিয়ে এসেছিলেন।তাদের আইনজীবী ধর্মান্তরিত হওয়া সর্ম্পকিত সেই এফিডেভিট মাহফিলে পড়ে শোনান।" "তারা মিজানুর রহমান আজহারীর কাছে ধর্মান্তরিত হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আজহারী সাহেবকে যখন আমরা প্রস্তাব দেই, তখন উনি অপারগতা প্রকাশ করেন। কারণ কিছুদিন আগেও এরকম একজন বোন ধর্মন্তরিত হয়েছিলেন এবং তা নিয়ে আজহারী সাহেবের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হয়েছিল। সেজন্য আমরা মঞ্চে থাকা আরেকজন আলমকে দিয়ে ঐ পরিবারকে কালিমা পড়ানো হয়েছিলো।" পুলিশ সুপার এ এইচ এম কামরুজ্জামান বলেছেন, "কেউ তাদের জোর করে ধর্মান্তরিত করেছে, এমনটা আমরা পাই নি। কেউ বাধ্য করলে তখন আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারতাম। এখানে তাদের ধর্মান্তরিত হওয়া না হওয়া আমাদের কাছে বিষয় ছিল না। আমাদের বিষয় ছিল, তারা ভারতীয় নাগরিক হয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে ছিল।" বিতর্কিত ধর্মীয় বক্তা মিজানুর রহমান আজহারীর ওয়াজ মাহফিলে যে পরিবারটির ধর্মান্তকরণ নিয়ে বিতর্ক চলছে, তাদের সবাইকে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। +text: মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম চূড়ান্ত করেছেন শেখ হাসিনা। তবে এবারই প্রথম শপথ গ্রহণের আগেই মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী হিসেবে যারা শপথ নেবেন তাদের নাম ঘোষণা করেছে সরকার। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম রবিবার সচিবালয়ে ব্রিফিং করে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ও তাদের মন্ত্রণালয় কোনটি হবে সেটি প্রকাশ করেছেন। তবে এবারের মন্ত্রিসভায় অনেক নতুন মুখের পাশাপাশি ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর গঠিত মন্ত্রিসভায় ছিলেন এমন অনেকেও স্থান পেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও মোট ৪৬ জন এবারের মন্ত্রিসভায় আসছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি জানিয়েছেন এবারের মন্ত্রিসভায় ৩১ জন নতুনভাবে এসেছেন। আরো পড়ুন: আমু, তোফায়েল, মেনন, ইনুসহ বাদ পড়লেন যারা নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে যা বললেন তোফায়েল নতুন সরকারের সামনে চ্যালেঞ্জ কী ভোটের জেরে 'একঘরে' গ্রাম: যা জানা যাচ্ছে ভারত ও চীনের সাথে কিভাবে ভারসাম্য করছে সরকার বাংলাদেশের নতুন মন্ত্রিসভার। মন্ত্রী হচ্ছেন যারা: প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন যারা: উপমন্ত্রী হচ্ছেন যারা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বান একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন সরকার শপথ গ্রহণ করবে আজ সোমবার। +text: দুধের মান পরীক্ষা করছেন এক গবেষক এর ফলে আগামী আট সপ্তাহ মিল্ক ভিটার দুধ বিক্রিতে আর কোন বাধা থাকবে না, তবে অন্য ১৩টি কোম্পানির পাস্তুরিত দুধের ওপর জারি করা নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। রাষ্ট্রায়ত্ব কোম্পানি বাংলাদেশ মিল্ক প্রডিউসার্র্স কো-অপারেটিভ ইউনিয়ন বা মিল্ক ভিটার করা এক আবেদনের শুনানির পর চেম্বার বিচারপতি সোমবার এ আদেশ দেন। বাংলাদেশে খাদ্য পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বিএসটিআইয়ের আইনজীবী ব্যারিস্টার সরকার এম আর হাসান মামুন বিবিসি বাংলাকে জানান, বাকি ১৩টি কোম্পানির পাস্তুরিত দুধ উৎপাদন, সরবরাহ ও বিপণন হাই কোর্টের আদেশ অনুযায়ী বন্ধই থাকছে। এর আগে পাস্তুরিত দুধে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান থাকায় ১৪টি প্রতিষ্ঠানের পাস্তুরিত দুধ উৎপাদন, সরবরাহ ও বিপণন পাঁচ সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখা��� নির্দেশ দেয় বাংলাদেশের আদালত। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: পাঁচ সপ্তাহের জন্য নিষিদ্ধ ১৪টি ব্র্যান্ডের দুধ দুধের মান নিয়ে দুই সংস্থার দুইরকম বক্তব্য কেন? অনেকেই খাঁটি দুধের নিশ্চয়তা দিয়ে ছোট বড় খামার গড়ে তুলেছেন জনস্বার্থে করা ২০১৮ সালের এক রিটের শুনানি শেষে আদালত এই নির্দেশ দেন। বাংলাদেশের বাজারে যেসব তরল দুধ পাওয়া যায় সেগুলো কতটা মানসম্মত সে বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই উদ্বেগ রয়েছে। আদালতের দ্বারা নিষিদ্ধ করা ১৩টি প্রতিষ্ঠান এবং ব্র্যান্ডগুলো হল: আফতাব মিল্ক অ্যান্ড মিল্ক প্রোডাক্ট লিমিটেড (আফতাব), আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ (ফার্ম ফ্রেশ), অ্যামেরিকান ডেইরি লিমিটেড, বারো আউলিয়া ডেইরি (ডেইরি ফ্রেশ), ব্র্যাক (আড়ং মিল্ক), ড্যানিশ ডেইরি ফার্ম লিমিটেড (আয়রান), ইছামতী ডেইরি লিমিটেড (পিউরা), ইগলু ডেইরি লিমিটেড (ইগলু), প্রাণ ডেইরি লিমিটেড (প্রাণ মিল্ক), উত্তরবঙ্গ ডেইরি খামার (মিল্ক ফ্রেশ), জিহান মিল্ক অ্যান্ড ফুড প্রসেসিং, শিলাইদহ ডেইরি (আলট্রা মিল্ক), এবং পূর্ব বাংলা ডেইরি প্রডাক্টস (আরওয়া)। বিএসটিআই এর আগে ১৪টি কোম্পানির পাস্তুরিত দুধকে জনস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ বলে জানালেও তার মধ্যে ১১টিতে বিপজ্জনক মাত্রায় সীসার উপস্থিতির কথা হাই কোর্টকে জানায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ নামে আরেকটি সংস্থা। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: ধর্ষণের শিকার কিশোরীর 'সন্দেহজনক' দুর্ঘটনা পেঁপে পাতার রস, নারিকেল তেল ডেঙ্গু নিরাময়ে উপকারী? ঢাকায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি এমন হলো কেন বাংলাদেশে পাস্তুরিত দুধ উৎপাদন এবং বিক্রির ওপর হাইকোর্ট যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল তা মিল্ক ভিটার দুধের ক্ষেত্রে আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছে সুপ্রিম কোর্টের একটি চেম্বার আদালত। +text: মাশরফী বিন মোর্ত্তজা শনিবার দুপুরে দেয়া তার টেস্টের রিপোর্টে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিশ্চিত করা হয়েছে বলে তার আত্মীয়স্বজনরা নিশ্চিত করেছেন। মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার পর, সাবেক ওপেনিং ব্যাটসম্যান নাফিস ইকবাল ও বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপুর শরীরেও করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। মাশরাফীর পরিবার দিনের আগের দিকে জানান, শুক্রবার থেকেই মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার জ্বর ছিল। তবে তার ভাই মুরসালিন বিন মোর্ত্তজা জানিয়েছেন, জ্বর ছাড়া তার আর কোন উপসর্গ নেই। মাশরাফি এখন ঢাকায় নিজ বাসাতেই আইসোলেশনে আছেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানানো হয়। তার আত্মীয়স্বজনরা জানিয়েছেন, এর আগে মাশরাফির শাশুড়ী এবং শালীর করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিশ্চিত হয়েছিল। সম্প্রতি তিনি দু'বার তার নিজ শহর নড়াইলে গিয়েছিলেন বলেও জানানো হয়। নাফিস ইকবালের করোনা শনাক্ত হওয়ার খবর জানিয়েছেন তার পরিবার। নাজমুল ইসলামও বিবিসি বাংলাকে ফোনে তার আক্রান্ত হবার খবর নিশ্চিত করেছেন। বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। +text: ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং আবুধাবীর ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ আল নাহিয়ান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, ইসরায়েলী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং আবুধাবীর ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ আল নাহিয়ান এক যুক্ত বিবৃতিতে জানিয়েছেন, "এই ঐতিহাসিক অগ্রগতি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির অগ্রযাত্রায় সাহায্য করবে" বলে তারা আশা করেন। তারা জানিয়েছেন, দুই দেশের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্কের বিনিময়ে ইসরায়েল পশ্চিম তীরের বিশাল ফিলিস্তিনি এলাকা ইসরায়েলের অংশ করে নেয়ার কাজ আপাতত স্থগিত রাখবে। ইসরায়েলের সঙ্গে এতদিন পর্যন্ত কোন উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রের কোন কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। তবে ঐ অঞ্চলে ইরানের প্রভাব বাড়তে থাকায় উদ্বিগ্ন সংযুক্ত আরব আমিরাত ইসরায়েলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ বাড়াচ্ছিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর মিস্টার নেতানিয়াহু হিব্রুতে টুইট করেছেন, "এক ঐতিহাসিক দিন" বলে। যুক্তরাষ্ট্রে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত ইউসেফ আল ওতাইবা বলেছেন, "এটি ঐ অঞ্চলে কূটনীতির বিজয়।" তিনি একে আরব-ইসরায়েল সম্পর্কে এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে বর্ণনা করে বলেন, এর ফলে উত্তেজনা কমবে এবং অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন হবে। সৌদি আরব-ইসরায়েল গোপন আঁতাতের কারণ কি ফিলিস্তিনি-ইসরায়েলি সংঘাতের মূলে যে দশটি প্রশ্ন ইসরায়েলের কাছে আরবরা কেন পরাজিত হয়েছিল? ইসরায়েলের সাথে কিছু আরব দেশের 'গোপন মৈত্রী'? এটি ইসরায়েলের সঙ্গে তৃতীয় কোন আরব রাষ্ট্রের শান্তি চুক্তি। এর আগে মিশর ১৯৭৯ সালে এবং জর্ডান ১৯৯৪ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করে। সামনের দিনগুলোতে ইসরায়েল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিনিধিরা বিনিয়োগ, পর্যটন, সরাসরি ফ্লাইট, ন��রাপত্তা, টেলিযোগাযোগ, জ্বালানি, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতি সহ নানা বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করার জন্য বৈঠকে বসবেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইসরায়েল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত দুই দেশের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপনে রাজি হয়েছে। +text: ক্রোয়াট প্রেসিডেন্ট কোলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচ তারকা ফুটবলার মদ্রিচকে আলিঙ্গন করছেন। হ্যাঁ, তিনি ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কোলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচ। তার ব্যাপারেই চলতি বছর সবচেয়ে বেশি জানতে চেয়েছেন বাংলাদেশের মানুষ। আর একথা জানিয়েছে সার্চ জায়ান্ট গুগলে প্রকাশিত ট্রেন্ডিং সার্চের সেরা তালিকা। এর মধ্য দিয়ে বেরিয়ে এসেছে কোন বিষয়ের প্রতি তাদের আগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি। বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে। প্রথম দশে খালেদা জিয়া এবং হিরো আলম চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়গুলোতে সার্চ করা হয়েছে, তার তালিকাও প্রকাশ করেছে গুগল। বাংলাদেশ থেকে সেরা দশের সার্চে রয়েছেন কারাবন্দী বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তার অবস্থান নয় নম্বরে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ এবং খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডের খবরের ব্যাপারে মানুষের আগ্রহ ছিল বেশি। দশ নম্বরে রয়েছেন বহুল আলোচিত তারকা ও স্বতন্ত্র সংসদ প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম, যিনি হিরো আলম নামেই বেশি পরিচিত। নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রশ্নে তার ঘোষণা, মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে আদালতে তার লড়াই সোশাল মিডিয়ায় ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করে। গুগল তার সার্চ ট্রেন্ডকে তিনটি ভাগে সাজিয়েছে - সার্চেস, পিপল এবং মুভিজ। পিপল ক্যাটাগরিতে ১০ জনের তালিকায় অন্যান্যদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের মালয়ালাম ভাষার চলচ্চিত্র অভিনেত্রী প্রিয়া প্রকাশ ভারিয়ার। হিরো আলম আরও পড়তে পারেন: ‘আহমেদ যদি হিন্দুর সামনে গরু কাটে, তা কি অপরাধ?’ আদালতের প্রতি খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের অনাস্থা ওয়ানডে ক্রিকেট সিরিজ: ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে যে কারণে হারতে পারে বাংলাদেশ তার করা ছবি অরু আদার লাভ-এর একটি গানে তার চোখ মারার ভিডিও ক্লিপ সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। এই তালিকায় আরও রয়েছেন ব্রিটেনের প্রিন্স হ্যারির স্ত্রী মেগান মার্কল এবং পর্নস্টার মিয়া খলিফা। সার্চেস ক্��াটেগরিতে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি খোঁজা হয়েছে যেসব শব্দ তা হলো: ক্রিকবাজ, ওয়ার্ল্ড কাপ, এসএসসি রেজাল্ট আর এইচএসসি রেজাল্ট। তবে মুভিজ ক্যাটেগরিতে বাংলাদেশের মানুষ এ বছর বেশি জানতে চেয়েছেন বলিউড সম্পর্কে। তারা সবচেয়ে বেশি খোঁজ করেছেন থাগস অব হিন্দোস্তান, টাইগার জিন্দা হ্যায়, রেস-৩, বাঘি-২, সঞ্জু ইত্যাদি হিন্দি ছায়াছবি। তবে বিশ্বব্যাপী যে পাঁচটি শব্দ মানুষ গুগুলে বেশি খুঁজেছে তা হলো: ওয়ার্ল্ড কাপ, এভিসি, ম্যাক মিলার, স্ট্যানলি ও ব্ল্যাক প্যান্থার। প্রিয়া প্রকাশ ভারিয়ারের সেই বিখ্যাত দৃশ্য। তিনি দেশের প্রেসিডেন্ট, রাশিয়ায় বিশ্বকাপ ফুটবলে নিজ দেশের প্রতিটি ম্যাচ তিনি ফ্যানদের সারিতে বসে দেখেছেন, ফাইনালে অঝোর বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে তিনি নিজ দলের প্রতিটি খেলোয়াড়কে আলিঙ্গন করেছেন, ম্যাচের পরাজয়ের জন্য সান্ত্বনা দিয়েছেন। +text: এখন অনেক ক্রেতাই নিয়মিত সুপারশপে বাজার করেন। আর নানারকম চটকদার বিজ্ঞাপন তাদের আকৃষ্ট করে অনেক নতুন পণ্যের দিকে। ফাইল ছবি কিন্তু দেশের খাদ্য আইন অনুসারে এ ধরনের কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ বেআইনি। ফলে পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে খাদ্য উৎপাদনকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং সাধারণ মানুষকে সতর্ক করার জন্য বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ প্রথমবারের মতো এক উদ্যোগ নিয়েছে। চটকদার বিজ্ঞাপনের ফাঁদে প্রতারণা? নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ-এর সদস্য মাহবুব কবির বিবিসি বাংলাকে বলেন, বিভিন্ন চটকদার বিজ্ঞাপন এবং লেবেলিং-এর মাধ্যমে প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। কিন্তু আইন অনুসারে কোন বিজ্ঞাপনে পণ্য সম্পর্কে মিথ্যাচার কিম্বা ক্রেতাকে প্ররোচিত করা যাবে না। এরকম একটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, "রং ফর্সাকারী ক্রিম হিসেবে প্রচারিত মেয়েদের একটি ক্রিমের বিজ্ঞাপনে কিছুদিন আগেও বলা হতো 'বিভিন্ন দেশের সব ক্রিমকে হারিয়ে এলো অমুক ক্রিম।' তখন আমরা প্রশ্ন করলাম তারা কোন কোন ক্রিমের সাথে কম্পিটিশন দেয় এসেছে? কিসের ভিত্তিতে তারা এসব বলছে? পরবর্তীতে ওই বিজ্ঞাপন কিন্তু তুলে নেয়া হয়েছে।" "আবার বাচ্চাদের কোনও খাবারের বিজ্ঞাপনে হয়তো বলা হচ্ছে 'আরও স্ট্রংগার, টলার, শার্পার করে তুলবে' এসব যে তারা বলেন কিসের ভিত্তিতে বলেন- আমরা সেটা জানতে চেয়েছি। তারা তাদের কাগজপত্র দিয়েছে। দেখা যাক কি তথ্য আছে তাদের কাছে।" মি. কবির বলেন "এমন কোন বিজ্ঞাপন দেয়া যাবে না যাতে মানুষ প্রতারিত হয়। কিন্তু বেশিরভাগ বিজ্ঞাপনই তাই।" "কেউ কেউ বিজ্ঞাপনে হয়তো বলছে, একটু বেশি পিওর- সেটা কিভাবে বলছে? এর মাধ্যমে তারা প্রতারণা করছে।" পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তির অংশবিশেষ তিনি জানান, ১৫ দিন আগেই একটি সুপরিচিত কোম্পানির শরবতের উপাদান সংক্রান্ত বিভ্রান্তির কারণে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং তাদেরকে চার লাখ টাকার জরিমানা করা হয় । মি. কবির বলেন, কোন কোন প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যের বিজ্ঞাপন করছে 'পৃথিবীর সেরা হালাল পানীয়' বলে। কিন্তু এই সার্টিফিকেট তাদের কে দিল? আবার 'একশোর ওপরে অসুখ ভালো হয়' এ ধরনের তথ্য দিয়ে বিজ্ঞাপন করা অবশ্যই বিধিমালা পরিপন্থী।" এমনকি 'আমার পণ্যই সেরা' এমন বক্তব্যও বলা যাবেনা বলে তিনি উল্লেখ করেন কেননা তাতে অন্যের পণ্যকে খাটো করা হচ্ছে। এ কারণেই কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়েছে পত্র-পত্রিকা মারফত বিজ্ঞপ্তি প্রচারে। শাস্তিযোগ্য অপরাধ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সাধারণ জনগণ ও খাদ্য ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে প্রচার করা এক গণ-বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, "কোন কোন খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত পণ্যের গুরুত্ব বৃদ্ধি করতে পণ্যের লেবেলে এমনকি ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াতেও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করছে।" উদাহরণ হিসেবে বলা হয়-"উৎপাদিত পণ্যটি সম্পূর্ণ ক্যামিকেল মুক্ত, বাজারের সেরা, আমারটাই সেরা, বিশ্বের সেরা ড্রিংকস, একটু বেশী পিওর, খেলে অসম্ভব হবে সম্ভব, রাতারাতি কমে যাবে বয়স, ভেজাল প্রমাণে লাখ টাকা পুরস্কার, ১০০% পিওর, ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল, রোগ থেকে দেয় সুরক্ষা, পণ্যটি যেন অমৃত সুধা, অন্যান্য পণ্যের চেয়ে শ্রেষ্ঠ ইত্যাদি অভিব্যক্তি দাবি করছেন যা আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।" এতে আরও বলা হয়, নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ এর লঙ্ঘন এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এর শাস্তি সবোর্চ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয়-দণ্ড হতে পারে। মি. কবির বলেন, "যাকেই ধরি তারা বলে আমরা তো আপনাদের আইন জানিনা। এ কারণে ৩১শে জুলাই পর্যন্ত সুযোগ দিচ্ছি আমরা। এর মধ্যে যার যার লেবেলিং-এ ত্রুটি আছে সেসমস্ত পণ্য নতুন করে বাজারে আনতে হবে।" তিনি বলেন, তা নাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কী বলছেন বিজ্ঞাপন নির্মাতারা? একজন সুপরিচিত বিজ্ঞাপন নির্মাতা অ��িতাভ রেজা চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে বলেন, "আমরা কোন এজেন্সি না। আমরা কেবলই বিজ্ঞাপন নির্মাতা। পণ্য সম্পর্কে রিসার্চ করা বা তথ্য যাচাই করা, স্ক্রিপ্ট লেখা আমাদের এখতিয়ারে পড়েনা। এজেন্সি থেকে চিত্রনাট্য যখন আসে তখন আমরা তার একটি লাইনও বদলাতে পারিনা। নীতিগতভাবে আমাদের নির্মাতাদের কিছু করার থাকে না।" তিনি বলেন, "বাংলাদেশে এ সংক্রান্ত সঠিক কোন নীতিমালা নাই। যদি কোন নীতিমালা না থাকে তাহলে কোন লাভ হবে না।" অন্যান্য দেশে এধরনের মন্তব্য বা বক্তব্য থাকলে যে কেউ চ্যালেঞ্জ করতে পারে। ফলে সেইভাবে বিষয়টা ফিল্টার্ড হতে পারে, আদালতে যেতে পারে। এখানে সে সুযোগ নেই, মন্তব্য অমিতাভ রেজা চৌধুরীর। আরও পড়ুন: রাসায়নিক দিয়ে পাকানো ফল কতটা নিরাপদ? বাংলাদেশে পাস্তুরিত দুধে যেভাবে জীবাণু ঢুকছে বাংলাদেশে খাদ্যে ফরমালিন: বাস্তবতা নাকি বিভ্রান্তি? বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ বলছে, দেশের অনেক নামকরা খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন চটকদার বিজ্ঞাপন এবং লেবেলের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে চলেছে। আর এতে ব্যাপকভাবে বিভ্রান্ত হচ্ছেন ক্রেতারা। +text: ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেন গতকাল গণফোরাম কমিটির বৈঠক শেষে বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন বলেন, "আমরা অতীতেও করিনি, জামায়াতকে নিয়ে আমরা ভবিষ্যতেও রাজনীতি করবো না।" বিএনপির ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, "জামায়াতকে ছাড়ার জন্য বিএনপিকে বলা যেতে পারে।" এর মধ্য দিয়ে ঐক্যফ্রন্ট-এর মধ্যে কোন বিভক্তির আঁচ পাওয়া যাচ্ছে? এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আমেরিকান পাবলিক ইউনিভার্সিটি সিস্টেমের শিক্ষক ড. সাঈদ ইফতেখার আহমেদ জানান, বিএনপির সঙ্গে যে জামায়াতে ইসলাম রয়েছে এটা জেনেশুনেই গণফোরাম বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করেছে। এখন তারা সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে এসে সংসদে যাওয়ার একটি পথ খুঁজছে বলে তিনি মনে করেন। সংসদে যোগ দেয়ার প্রশ্নে ঐক্যফ্রন্টের শরিক হিসেবে গণফোরামের ড. কামাল হোসেন এখন এক ধরণের চাপের মধ্যে রয়েছেন বলে মনে করেন ড. আহমেদ। তার মতে, রাজনৈতিক দলের দৃষ্টিকোণ থেকে গণফোরাম এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে। কেননা এবার তারা প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুটি আসন লাভ করেছে। তার মধ্যে একটি গণফোরামের নিজস্ব প্রতীক "উদীয়মান সূর্য" নিয়ে। যে দলটিকে মানুষ ভুলে যেতে বসেছিল। সেখানে বিজয়ী দুটি আসন থেকে যারা নির্বাচিত হয়ে এসেছেন সেইসঙ্গে দলের অন্য যে কর্মীরা রয়েছেন তাদের ওপর এখন সংসদে যাবার জন্য এক ধরণের চাপ সৃষ্টি হয়েছে বলে তার ধারণা। সরকারের সাথে সংলাপে ড. কামাল হোসেন আরও পড়তে পারেন: আওয়ামী লীগ থেকে ড. কামাল যেভাবে বেরিয়ে আসেন নির্বাচন পরবর্তী ঐক্যফ্রন্টের ভবিষ্যৎ কী? সাংবাদিকদের কাছে দু:খ প্রকাশ করলেন ড. কামাল হোসেন তবে গণফোরাম যে আসনটিতে উদীয়মান সূর্য প্রতীক নিয়ে জয়লাভ করেছে সে আসনে যদি বিএনপি সমর্থন না দিতো, গণফোরামের পক্ষে সেখানে জয়লাভ করাটা কি অসম্ভব হতো? এ প্রসঙ্গে ড. সাঈদ ইফতেখার আহমেদ বলেন, "পুরো বাংলাদেশের কোথাও গণফোরামের জয়লাভের কোন সম্ভাবনা ছিল না। সেজন্য এবারের জাতীয় নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে গণফোরাম এবং সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দল হচ্ছে বিএনপি।" গণফোরামের লাভবান হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি মনে করেন, বিএনপির সঙ্গে গণফোরাম যে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছে, সেটাকে তারা ব্যবহার করতে পেরেছে। এবং এটাই ড. কামাল হোসেনের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সফলতা। সুতরাং এখান থেকে ধারণা করা যায় যে গণফোরাম সংসদ বর্জন করবে না। আর তাই সংসদে যাওয়ার জন্য একটি পথ তৈরির কৌশল হিসেবে জামায়াত প্রসঙ্গটিকে তারা সামনে নিয়েছে এসেছে। এদিকে বিএনপির সামনে যদি এমন কোন পরিস্থিতির তৈরি হয় যে, হয় ঐক্যফ্রন্ট না হলে জামায়াতে ইসলামীকে বেছে নিতে হবে, তাহলে তাদের সামনে কোন পথটি বাস্তবসম্মত বা রাজনৈতিকভাবে লাভজনক হবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. আহমেদ বলেন, "বিএনপির মধ্যে যে সংকটটি দেখা যাচ্ছে সেটি হল তাদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর প্রতি এক ধরণের মনস্তাত্ত্বিক নির্ভরতা তৈরি হয়েছে। আন্দোলন সংগ্রামের ক্ষেত্রেও, বিএনপি গত ১০ বছর ধরে জামায়াতের ওপর নির্ভরশীল।" মতাদর্শের দিক থেকেও জামায়াত ও বিএনপি খুব কাছাকাছি বলে তিনি মনে করেন। কিন্তু তার মতে, বাস্তবতা হচ্ছে বিশ্ব রাজনীতির যে পরিবর্তন, সেখানে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি একটা প্রান্তিক দিকে ধাবমান এবং তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে এবং আওয়ামী লীগও ধর্মভিত্তিক রাজনীতির ক্ষেত্রে একটা শক্ত অবস্থান নিয়েছে। ড. সাঈদ ইফতেখার আহমেদ। "কিন্তু এই হিসাবটা বিএনপি করতে পারছে না যে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নির্ভর করে বিএনপির রাজনীতিতে সামনে এগিয়ে যাও���়া অনেক কঠিন।" জানান ড. সাঈদ ইফতেখার আহমেদ। সুতরাং বিএনপি এই বাস্তবতা যতদিন ধরে বুঝতে না পারবে, ততদিন তারা ঐক্যফ্রন্টের চাইতে জামায়াতকে প্রাধান্য দেবে এবং জামায়াতের সাথে তাদের যে ঐক্য সেটা তারা ধরে রাখতে চেষ্টা করবে বলে তিনি মনে করেন। কিন্তু বিএনপি যদি জামায়াতে ইসলামীর কাছ থেকে সরে আসার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়। তাহলে জামায়াতে ইসলামীর যে ভোটার গোষ্ঠী বাংলাদেশে রয়েছে, সেটা কি তারা ছাড় দিতে পারবে? মূলত এই বিষয়টিকে বিএনপির সবচেয়ে বড় দুর্বলতার জায়গা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন সাঈদ ইফতেখার আহমেদ । কেননা জামায়াতের পাঁচ থেকে সাত শতাংশ ভোটারের গোষ্ঠী ধরে রাখতে গিয়ে বিএনপি, অমুসলিম সম্প্রদায়ের ১০ বা ১২ শতাংশের ভোটব্যাংক থেকে নিজেদের বঞ্চিত করছে। এবং জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে দীর্ঘদিন জোটবদ্ধ থাকার ফলে বিএনপি সেই জায়গাটি থেকে এখন বেরিয়ে আসতে পারছেনা। ফলে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের রাজনীতিতে যে পরিবর্তন হচ্ছে, সেটাকে তারা নিতে পারছেনা। ড. সাঈদ ইফতেখার আহমেদ বলেন, "সব মিলিয়ে বিএনপিকে আজকে যদি জামায়াতকে ছেড়ে আসতে হয়, তাহলে তাদের যে রাজনীতি, সেটাকে তাদের নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে। সেক্ষেত্রে তাদের যে কয়টি মৌলিক নীতি রয়েছে, বিশেষ করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির ক্ষেত্রে, সেখান থেকে তাদের সরে আসতে হবে।" জামায়াত প্রসঙ্গে বিরোধীদলীয় জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেনের বক্তব্যের মাধ্যমে বাংলাদেশের নির্বাচন-উত্তর রাজনীতি এক নতুন মোড় নিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। +text: সিভিল সার্জন ড. সালাম বলছেন, ডায়রিয়া, জন্ডিস এবং হামের বাইরে প্রাণঘাতী রোগের মধ্যে তারা দুজন এইচআইভি আক্রান্ত রোগী পেয়েছেন। এরই মধ্যে শরণার্থী কিছু শিশুর মধ্যে হাম ধরা পড়েছে এবং অন্তত দুজন শরণার্থী এইচআইভি আক্রান্ত বলে নিশ্চিত হয়েছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। তবে সরকারি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, সবচেয়ে বড় আশঙ্কা হচ্ছে ব্যাপকহারে ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দিতে পারে। সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, তারা কয়েকটি সংক্রামক রোগ নির্ণয়ের জন্য শরণার্থীদের মধ্যে বড় আকারে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে চাইছেন। মিয়ানমার থেকে সম্প্রতি পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রয়োজনীয় টিকা না থাকাটাকে প্রথম থেকেই বড় উদ্বেগ হিসেবে নিয���েছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। কক্সবাজার জেলার সিভিল সার্জন ড: আব্দুস সালাম জানাচ্ছেন, সংক্রামক রোগের মধ্যে তারা এখন পর্যন্ত ৬ জন হামের রোগী পেয়েছেন এবং তাদের চিকিৎসাও দেয়া হয়েছে। তিনি বলছেন, গত ১৬ই সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে যে হাম এবং পোলিওর টিকা প্রদান এবং ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে তাতে হামের মতো সংক্রামক রোগের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে গেছে। তবে এখন বড় শঙ্কা রয়েছে ঐ এলাকায় পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার। "স্যানিটেশন যদি আমরা ইমপ্রুভ করতে না পারি, তাহলে যেকোনো মুহূর্তে ডায়রিয়া, কলেরা বা জন্ডিসের মতো আউটব্রেক হতে পারে"। ড. সালাম বলছেন, বাংলাদেশের মতো বার্মাতেও পোলিও রোগ সেভাবে নেই। তবে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে তারা শিশুদের পোলিও টিকা খাওয়াচ্ছেন। তবে অপুষ্টি এবং নিউমোনিয়ার প্রকোপের কারণে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা সহজেই যেকোনো রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা, মেদসাঁ স্যঁ ফ্রঁতিয়ে জরুরী সমন্বয়ক রবার্ট ওনাস বলছিলেন, শরণার্থীদের মধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত বসবাসের ব্যবস্থা না থাকায় সেখানকার পুরো জনগোষ্ঠির মধ্যেই রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে যায়। "ব্যাপকহারের শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা, যেমন নিউমোনিয়া আমাদের জন্য বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুর্বল হয়ে পড়া এবং খাবার ও পানির সঙ্কটে থাকা এসব মানুষেরা ডায়রিয়াতেও আক্রান্ত হচ্ছেন এবং যার ফলে খুব দ্রুতই তাদের অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। গত কয়েক সপ্তাহে আমরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত অনেক রোগী পেয়েছি যারা মৃত্যুর প্রায় কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন। এর একটি কারণ হচ্ছে অনেকে এমন সব জায়গায় আছেন যেখানে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়াটা কঠিন। সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থা যারা কাজ করছে তাদের পক্ষেও সব জায়গায় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি"- বলেন মি. ওনাস। গত কয়েক সপ্তাহে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে রাখাইন মিয়ানমারের সবচেয়ে দরিদ্র একটি রাজ্য এবং সেখানে রোহিঙ্গাদের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা এবং স্বাস্থ্যশিক্ষার ব্যাপক অপ্রতুলতা রয়েছে। গত বছরও প্রায় ৮০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা শরণার্থী আসলেও এবার এত অল্প সময়ের মধ্যে ৪ লাখেরও ���েশি রোহিঙ্গা এসে পড়ায় ঠিক কী ধরণের স্বাস্থ্য সংকট তৈরি হতে পারে তা নির্ণয় করাটাও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিভিল সার্জন ড. সালাম বলছেন, ডায়রিয়া, জন্ডিস এবং হামের বাইরে প্রাণঘাতী রোগের মধ্যে তারা দুজন এইচআইভি আক্রান্ত রোগী পেয়েছেন। কিন্তু ঠিক কী মাত্রায় এ রোগগুলো আছে সেটি বের করতে তারা শরণার্থীদের মধ্যে বড় আকারে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে চাইছেন। তিনি বলেন, "এইচআইভি এবং হেপাটাইটিস বি-এর স্ক্রিনিংটা যদি আমরা করতে পারি, তাহলে আমরা অনুমান করতে পারবো যে কত শতাংশের মধ্যে এই রোগটা আছে। তখন আমরা সেই অনুসারে ব্যবস্থা নিতে পারবো।" বাংলাদেশে মিয়ানমার থেকে সম্প্রতি আসা রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং আশেপাশের এলাকায় পানিবাহিত সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে স্বাস্থ্যসেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। +text: রাজধানীসহ সারাদেশে ২৪ ঘণ্টা বন্ধ ছিল ইন্টারনেট সেবা। সব মোবাইল অপারেটরের গ্রাহকেরাই এখন এই সেবা পাচ্ছেন বলে জানা যাচ্ছে। তবে প্রায় ২৪ ঘণ্টা সারাদেশে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হওয়ায় বিপাকে পড়েছে সাধারণ ব্যবহারকারী এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরণের ব্যবসা চালান এমন মানুষেরা। ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সৈয়দ ইফাত আরা, চাকরির পাশাপাশি ফেসবুকে একটি অনলাইন ব্যবসার পেইজ পরিচালনা করেন। গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে ২৪ ঘণ্টা দেশব্যাপী মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় একদিকে যেমন তিনি ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি, তেমনি পণ্য পৌঁছে দিতেও ব্যাপক দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয় তাকে। "ব্যবসার যোগাযোগের জন্য আমাকে পুরোপুরি ইন্টারনেটের ওপর নির্ভর করতে হয়। ইন্টারনেট বন্ধ থাকা মানে ব্যবসাও ঝুঁকিতে পড়া।" "ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় আমি কোন ক্লায়েন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি, অর্ডারও নিতে পারিনি, নতুন কিছু পোস্ট করতে পারিনি। এদিকে সকালে অফিস আসার জন্য উবার পাঠাও কোনটাই পাইনি। অনেক ঝামেলায় পড়তে হয়েছে এ জন্য।" প্রায় একই ধরণের ঝামেলায় পড়েছেন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা অদিতি পাল। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে আজ একজন আত্মীয়কে টাকা পাঠানো জরুরি হলেও, মোবাইল ইন্টারনেট না থাকায় সময়মত সেটা সম্ভব হয়নি। "আজকে অফিস যাওয়ার পথে আমার জরুরি কিছু টাকা পাঠানোর দরকার ছিল। কিন্তু মোবাইল ইন্টারনেট না থাকায় আমি সেটা কোনভাবেই পারলাম না। অফিসে ওয়াইফাই জোনে এসে সেটা করতে হয়েছে। এই পুরো সময়টা টেনশনে ছিলাম আমি।" বাংলাদেশে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করেন সাড়ে সাত কোটিরও বেশি গ্রাহক। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যেই হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এই মোবাইল ইন্টারনেট সেবা। কারণ জানতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এজন্য কারিগরি ক্রুটিকে দায়ী করেন। "আমরা শুনেছি কোথাও কোথাও ইন্টারনেট ব্যবহারে সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু আমরা অফিশিয়ালি কোন কিছু বন্ধ করিনি। টেকনিকাল সমস্যা হতে পারে। আমরা এটা ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগকে জানিয়েছি।" শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো ঠেকাতে এই ইন্টারনেট সেবা সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে বলে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠলেও, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, তার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এমন কোন নির্দেশনা দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, "আমি এখন পর্যন্ত যতোটুকু জানি এটা একটা কারিগরি সমস্যা। আমার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এ ধরণের সমস্যা থাকলে সেটা যেন দ্রুত দূর করা হয়। এবং টেলিকম কোম্পানিগুলো নিশ্চয়ই দ্রুত এটা সমাধানের চেষ্টা করবে।" আরো পড়তে পারেন: ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের ব্যবহার কমাতে এসেছে নতুন টুল বাংলাদেশে ইন্টারনেটের দাম এত বেশি কেন? ফাইভ জি সম্পর্কে যেসব তথ্য না জানলেই নয় এ বিষয়ে জানতে দেশের শীর্ষ কয়েকটি টেলিকম প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোন মন্তব্য করতে রাজী হয়নি। তবে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যুতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নির্দেশনার ভিত্তিতে এই মোবাইল ইন্টারনেটের থ্রিজি ও ফোরজি সেবা ২৪ ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে রোববার সন্ধ্যার দিকে আবার স্বাভাবিক হয়ে আসে মোবাইলের থ্রিজি ও ফোরজি ইন্টারনেট সেবা। শনিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ২৪ ঘণ্টা সারাদেশে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকার পর স্বাভাবিক হয়েছে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা। +text: এই ধরনের রঙচঙে ব্যাগে করেই এসটিআই টেস্ট কিট ও কন্ডোম পাঠানো হয় কিন্তু সম্প্রতি একজন নারী শিল্পোদ্যোগী ���ে দেশে এমন এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন, যাতে তরুণ-তরুণীরা নিরাপদ যৌনতার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারছেন। সবচেয়ে বড় কথা, সেটা করা যাচ্ছে বেশ কম খরচে ও নিজেদের গোপনীয়তা সম্পূর্ণ বজায় রেখে। কীভাবে তিনি সে কাজ করছেন আর কেমন সাড়া পাচ্ছেন, তা নিয়েই খোঁজ নিয়েছিলেন বিবিসির এমেলিয়া মার্টিন-হেমফিল। নিরাপদ যৌনতার অভাবে সংক্রমণের ঘটনা, যাকে বলে সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ইনফেকশনস বা এসটিআই, নাইজেরিয়াতে আকছার ঘটে - কিন্তু কীভাবে তা ঠেকাতে হবে দেশের বেশির ভাগ তরুণ-তরুণীর সে ব্যাপারে কোনও ধারণাই নেই। স্লাইড সেফের বিজ্ঞাপনী ক্যাম্পেন আমাদের পেজে আরও পড়তে পারেন : পাকিস্তানে ভোট চলছে: ইমরান খানের সময় এসেছে? নেদারল্যান্ডসে গর্ভবতী মাকে ভায়াগ্রা: প্রাণ গেলো ১১ নবজাতকের থর মরুভূমিতে বিলাসবহুল টেন্ট কিন্তু তারা যাতে নিজের ঘরে বসেই, কাউকে কিছু না জানিয়ে খুব সহজে পরীক্ষা করতে পারে তারা সংক্রামিত হয়েছে কি না, সেটাকেই যেন একটা মিশন হিসেবে নিয়েছেন ফ্লোরিডা উজুয়ারু। এ জন্য তিনি চালু করেছেন একটি অনলাইন কোম্পানি, স্লাইডসেফ। "যৌনতা নিয়ে কথা বলাটা এদেশে অনেকের জন্যই বড় সমস্যা, কারণ বললে এখানে সামাজিক কলঙ্কের শিকার হতে হয়। কিন্তু যৌনতা তো আর আপনি বন্ধ করতে পারবেন না, কাজেই আমরা চাইছি সেটা যেন নিরাপদে ও বিপদমুক্তভাবে করা যায়।" "যৌন সংক্রমণের জন্য নিয়মিত পরীক্ষা চালিয়ে ও কনডোম ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা এই নিরাপদ যৌনতাকেই উৎসাহিত দিচ্ছি", বলছিলেন মিস উজুয়ারু। ফ্লোরিডা উজুয়ারুর সংস্থা গ্রাহকদের বাড়িতে বা অফিসে রঙিন গিফট ব্যাগে করে এসটিআই টেস্ট কিট বা জন্মনিরোধক পাঠানোর ব্যবস্থা করে - যা দেখে বাইরে থেকে কারও কিছু বোঝার উপায় থাকে না। নাইজেরিয়াতে অন্তত ৩২ লক্ষ লোক এইচআইভি সংক্রমণ নিয়ে বেঁচে আছেন, কিন্তু জনসংখ্যার নব্বই শতাংশ জীবনে কখনও এইচআইভি টেস্টই করাননি। কিন্তু স্লাইডসেফের পাঠানো কিট দিয়ে মানুষ খুব সহজেই হেপাটাইটিস-বি, এইচআইভি কিংবা সিফিলিসের মতো যৌনরোগ তার হয়েছে কি না সেই পরীক্ষা করতে পারেন - কোনও ডাক্তার বা নার্সের সাহায্য ছাড়াই। ফ্লোরিডা উজুয়ারু এ পর্যন্ত স্লাইডসেফ সাতশোরও বেশি কিট বিক্রি করেছে, যার দাম পাঁচ থেকে বিশ ডলারের মধ্যে। আনিকা (নাম পরিবর্তিত) ও তার বয়ফ্রেন্ডও নিজেদের পরীক্ষার জন্য ওই অনলাইন কোম্পানি থ���কে কিট আনিয়েছেন। আনিকার কথায়, "মেয়েদের আসলে এই বিষয়গুলো আসলে অত ভাল জানার কথাও না। তাই স্লাইডসেফের সবচেয়ে ভাল দিকটা হল তারা পুরো জিনিসটা গোপন রাখতে সাহায্য করে। নিজের ঘরের স্বাচ্ছন্দ্যে বসেই আপনি টেস্ট করতে পারছেন, অন্য কাউকে জড়ানোর দরকারই নেই। ওদের আর যে জিনিসটা আমার ভাল লাগে, তা হল ওরা সব সময় সাহায্য করতে তৈরি।" ওই কোম্পানিতে কিছু অর্ডার করতে হলে আপনার আসল নাম দেওয়ারও দরকার নেই - শুধু একটা ফোন নাম্বারই যথেষ্ঠ। সেখানেই হোয়াটসঅ্যাপ করে কোম্পানি জানিয়ে দেবে, কীভাবে কিট ব্যবহার করবেন - কিংবা পরীক্ষার ফল পজিটিভ হলেই বা কী করতে হবে। স্লাইডসেফের গ্রাহক ওমর (নাম পরিবর্তিত) বলছিলেন হাসপাতাল বা ক্লিনিকে যাওয়ার চেয়ে এই পদ্ধতিটা কেন অনেক ভাল। স্লাইডসেফের কিটবক্স তার কথায়, "দিনের যে কোনও সময় আপনি ওদের সাহায্য চাইতে পারেন এই ব্যাপারটা আমার খুব ভাল লাগে। আর তা ছাড়া এখানে টেবিলের উল্টোদিকে বসে কেউ আপনাকে জাজও করছে না যে, এই লোকটা খুব খারাপ। আমি নিজে যেমন ফোন করার চেয়ে চ্যাট করাতেই স্বচ্ছন্দ বোধ করি, আর সামনে কেউ বসে থাকলে তার কাছে আমি তো সহজই হতে পারবো না!" ফ্লোরিডা উজুয়ারুও বলছিলেন তাদের অভিজ্ঞতা বলে বেশির ভাগ লোকই হাসপাতালে যেতে চান না কারণ সেখানকার কর্মীদের কাছ থেকে সংবেদনশীলতা আশা করা যায় না। "ফলে আমাদের সংস্থা এ ব্যাপারে অতিরিক্ত সতর্ক থাকে যে গ্রাহকদের চরিত্রের ভালমন্দ যাতে কোনওভাবেই বিচার না করা হয় এবং আরও বেশি সংখ্যায় মানুষ এই পরিষেবা ব্যবহারে স্বচ্ছন্দ বোধ করতে পারে।" নাইজেরিয়াতে সমকামিতাও একটি অপরাধ হিসেবে গণ্য হয় - আর সমলিঙ্গের দম্পতিদের জন্যও সরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে যাওয়া একরকম অসম্ভব। তাদের জীবনের নানা যৌন সমস্যার প্রতিকারেও খুবই কাজে আসছে এই স্লাইডসেফ। আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়াতে যৌনতা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলার কোনও রেওয়াজ নেই, আর যারা তা বলেন তাদের সামাজিকভাবে বেশ হেয় হতে হয়। +text: সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব সন্ধ্যায় চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবীতে সংসদে কথা বলার সীমিত সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সংসদ ও রাজপথের সংগ্রামকে যুগপৎভাবে চালিয়ে যাওয়াকে তারা যৌক্তিক মনে করেছেন। "রাজনীতির সং���টময় এই জটিল প্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা, মুক্তি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামের অংশ হিসেবে আমাদের দল সংসদে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে"। তবে তিনি নিজে কখন শপথ নেবেন - এই প্রশ্নের জবাবে মিস্টার আলমগীর বলেন, "অপেক্ষা করুন, জানতে পারবেন"। আবার এতোদিন শপথ না নেয়ার কথা বলে আজ কেনো নতুন সিদ্ধান্ত হলো তারও কোনো ব্যাখ্যা দেননি। তবে বক্তব্যের শুরুতেই তিনি বলেন, "গতরাতে স্থায়ী কমিটির সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা তারেক রহমানকে দিয়েছিলো। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। তারই প্রেক্ষাপটে আজ চারজন শপথ নিয়েছেন"। দলীয় সিদ্ধান্তেই শপথ নিয়েছি: বিএনপির চার এমপি ফখরুল ছাড়া বাকীদের শপথ ঠেকাতে পারবে বিএনপি? বিএনপি ও জিয়া পরিবারের রাজনীতি কোন পথে? শপথ নিচ্ছেন বিএনপির চার এমপি সংসদে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হলে কেন আগে শপথ নেয়া জাহিদুর রহমানকে বহিষ্কার করা হলো তারও কোনো জবাব দেননি তিনি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, সরকার তার গ্রহণযোগ্যতার জন্য ভোটারবিহীন এই সংসদকে সচল দেখাতে চায়। "এটুকুই আজ গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার ন্যূনতম সুযোগ হিসেবে বিরোধী জনমতের জন্য অবশিষ্ট আছে" - বলেন মি. আলমগীর। বাংলাদেশের বিরোধী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামের অংশ হিসেবে বিএনপি সংসদে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। +text: শরবত বিক্রির দায়ে ১৫০ পাউন্ড জরিমানা করা হয়েছিল শিশুটিকে কিন্তু ওই শিশুটি এখন অনেক চাকরির প্রস্তাব পাচ্ছে। অনেকে বলছে বিভিন্ন ইভেন্টে সে তার নিজস্ব স্টল খুলতে পারে। শিশুটির বাবা আন্দ্রে স্পাইসার একটি বিজনেস স্কুলের শিক্ষক , তিনি পূর্ব লন্ডনের লাভবক্স ফেস্টিভ্যালে গিয়েছিলেন। সেসময় ফেস্টিভ্যালে প্রবেশের মুখে তাঁর পাচ বছর বয়সী শিশুটি শখের বশে একটি টেবিল নিয়ে তাতে শরবতের সরঞ্জাম সাজিয়ে বসে। শিশুটি উৎসবে যাওয়া মানুষের কাছে লেবুর শরবত বিক্রি করতে চেয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে কাউন্সিলের চারজন কর্মকর্তা এসে শিশুটিকে জরিমানা করে বসে। তারা বলে যে ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া সে ব্যবসা শুরু করেছে বলে জরিমানা করা হচ্ছে। যদিও পরে টাওয়ার হ্যামলেট কাউন্সিল এ ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছে ও জরিমানাও বাতিল ��রে দিয়েছে। মি: স্পাইসার জানিয়েছেন তার মেয়ে বোরো মার্কেটের উৎসবের সামনে যেন লেবুর শরবরত বিক্রির স্টল খুলে সেজন্য অনেক চাকরির প্রস্তাব পাচ্ছে। টুইটারে শিশুটির পরিবার বলেছে "বিশ্বব্যাপী মানুষের সাড়া দেখে আমরা খুব কৃতজ্ঞ ও আনন্দিত"। "বিভিন্ন ধরনের উৎসবের আয়োজকেরা তাদের উৎসব প্রাঙ্গনে লেবুর শরবতের দোকান দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন"। লন্ডনের রাস্তার মানুষের কাছে লেবুর শরবত বিক্রি করার দায়ে দেড়শো পাউন্ড জরিমানা করা হয়েছিল পাঁচ বছরের এক শিশুকে। অভিযোগ ছিল সে সড়কের পাশে অস্থায়ী দোকান খুলে শরবত বিক্রি করছিল। +text: উত্তর ইয়েমেনের অধিকাংশ অঞ্চলই হুতি বিদ্রোহীরা নিয়ন্ত্রণ করে একজন হুতি মুখপাত্র বিবিসিকে জানান যে সৌদি শহর নাজরানের কাছে সৌদি সেনাদের তিনটি ব্রিগেড আত্মসমর্পণ করেছে। তিনি বলেছেন, কয়েক হাজার সৈন্য আটক করা হয়েছে এবং অনেকে নিহত হয়েছে। তবে সৌদি কর্তৃপক্ষ এবিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানায়নি। ঐ হুতি মুখপাত্র জানান, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এটিই ছিল সবচেয়ে বড় মাপের অভিযান। কর্ণেল ইয়াহইয়া সারেয়া জানিয়েছেন যে, সৌদি সেনাবাহিনী 'বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও সেনা সদস্য হারিয়েছে।' আরো পড়তে পারেন: তেল ক্ষেত্রে হামলার প্রতিশোধ নেবে সৌদি আরব সৌদি আরবে হামলার পর জ্বালানী তেলের দাম বেড়েছে আমেরিকার সাথে যুদ্ধ হলে ইরান ধ্বংস হবে - ট্রাম্প যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের প্যারেড রবিবার হুতি নিয়ন্ত্রিত আল মাসিরা টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। হুতিদের দাবি, ১৪ই সেপ্টেম্বর সৌদি তেল শোধনাগারে তারা হামলা চালিয়েছিল, যার ফলে বৈশ্বিক তেলের বাজার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির পাশাপাশি সৌদি আরবও ঐ হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করেছে - যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তেহরান। কী প্রেক্ষাপটে এই হামলা? ২০১৬ সালে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আবদ্রাব্বু মনসুর হাদি ও তার মন্ত্রীসভা হুতিদের কারণে রাজধানী সানা থেকে পালাতে বাধ্য হন। সেসময় থেকেই যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে ইয়েমেনে। হুতিরা ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা দখল করে রেখেছে। সৌদি আরব প্রেসিডেন্ট হাদিকে সমর্থন করে এবং ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক দেশগুলোর সমন্বয়ে তাদের বিরুদ্ধে চলমান বিমান হামলার নেতৃত্ব দেয়। যৌথ বাহিনী প্রায় প্রতিদিনই বিমান হামলা চালায়। এর জবাবে হুতিরা সৌদি আরবে মিসাইল নিক্ষেপ করে। এই গৃহযুদ্ধের ফলে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মানব-সৃষ্ট বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে ইয়েমেন। মোট জনসংখ্যার ৮০% মানুষ বা প্রায় ২ কোটি ৪০ লাখ মানুষ মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। এদের মধ্যে প্রায় ১ কোটি মানুষ জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের জন্য সম্পূর্ণভাবে ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল। প্রায় পৌনে দুই কোটি মানুষের জানা নেই, তাদের পরবর্তী বেলার খাবার জুটবে কিনা। পাঁচ বছরের নীচের ৪ লাখ শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগছে, যা তাদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলছে। দেশটিতে স্বাস্থ্য সেবা ভেঙ্গে পড়েছে, কলেরা আর ডিপথেরিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। জাতিসংঘের ধারণা অনুযায়ী, সংঘাতের কারণে ২০১৬ থেকে ৭০ হাজারের বেশি মানুষ এখন পর্যন্ত মারা গেছে। ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের দাবি অনুযায়ী, ইয়েমেন ও সৌদি আরবের সীমান্ত অঞ্চলে এক অভিযানের সময় তারা বিপুল সংখ্যক সৌদি সেনা সদস্যকে আটক করেছে। +text: গদখালী গ্রাম ও আশেপাশের এলাকায় বছরে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা মূল্যের ফুল উৎপাদন হয়। গদখালী নামের ওই গ্রাম ও আশপাশের হাজার হাজার একর জমিতে বছর জুড়ে উৎপাদন হচ্ছে দেশী বিদেশী নানা জাতের ফুল যার বার্ষিক বাজার মূল্য প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। এই গ্রামের ফুল সারাদেশ তো বটেই, যাচ্ছে বিদেশেও। কিন্তু এই গ্রামটি কি করে সাধারণ ধান পাটের বদলে ফুল চাষের জন্য বিখ্যাত হয়ে ফুলের রাজ্যে পরিণত হলো? যশোর সদর থেকে প্রায় পঁচিশ কিলোমিটার দুরে ঝিকরগাছার এই গদখালী গ্রাম। খুব ভোরেই এখানে জমে উঠে বাংলাদেশের বৃহত্তম ফুলের বাজার। ঢাকাসহ নানা জায়গার ব্যবসায়ীরা এসে ট্রাক বা পিক আপ ভর্তি করে ফুল নিয়ে যান আর এসব ফুল বিক্রি হয় সারাদেশে বিশেষ করে শহর এলাকাগুলোতে। কিন্তু এতো ফুল হয় কোথায়। সেটি দেখতেই আমি গিয়েছিলাম গদখালী গ্রামে। রাস্তার দু'পাশে তখন চোখ ও প্রাণ জুড়ানো অসংখ্য ফুলের বাগান । একজন চাষি বাগানে কাজ করছিলেন। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন প্রতিদিন তার বাগান থেকে ৪/৫ হাজার গোলাপ হয় আবার কখনো সেটি পাঁচশও হয়। "জানুয়ারিতে ফুল আসবে। সেই প্রস্তুতি নিচ্ছি এখন"। প্রতিদিনই এই গদখালী ও আশপাশের এলাকায় ফুলের রাজ্য দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসেন অসংখ্য নারী পুরুষ। আরো পড়তে পারেন: মার্ক্সবাদী বিপ্লবী রোজা লুক্সেমবার্গ এখনো প্রাসঙ্গিক যেভাবে কোন বয়সে হওয়া উচিত প্রথম যৌনমিলন? কোন ধরণের শর্করা কতটুকু খাওয়া উচিত? শফী'র মন্তব্যে আপত্তি থাকলেও সমর্থন অনেকের বিশেষ ঘর যার নাম পলি হাউজ--চলছে ফুল চাষ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা একজন নারী বলেন, "চারপাশে ফুল আর ফুল। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে গোলাপ নেই এখন। জারবেরা, গ্লাডিওলাস এগুলো দেখেও শান্তি পেলাম"। আরেক জন বলেন, "একটা হচ্ছে অনেক ধরণের ফুল আরেকটা হলো অনেক বেশি পরিমাণ ফুল। বাংলাদেশের বেশিরভাগ ফুল এখান থেকেই যায়"। অপর একজন বলেন, "কোথা থেকে এতো ফুল আসে সেটি দেখতেই গদখালীতে এলাম"। গদখালীতে ফুল চাষের ইতিহাস গদখালীতে ফুল চাষ শুরু হয়েছিলো কিভাবে তার খোঁজ নিতে গিয়ে সন্ধান মিললো শের আলী সরদারের। তার দাবি চার দশক আগে তার হাত ধরে এখানে শুরু হয় ফুলের চাষ আর এলাকার ক্ষেতখামার থেকে বিদায় নিতে শুরু করে ধান পাট বা এ ধরণের প্রচলিত শস্য। তিনি বলেন, "১৯৮২ সালে এরশাদ আমলে এক বিঘা জমিতে রজনীগন্ধা দিয়ে শুরু করেছিলাম। আমার বাবার নার্সারি ছিলো এবং আমি সেখানেই বসে ছিলাম। ভারত থেকে আসা এক ভদ্রলোক এসে পানি চেয়েছিলো।" "তার হাতে ফুল। তিনি বললেন এই ফুল পশ্চিমবঙ্গে অনেক হয়। তো আমি ভাবলাম পশ্চিমবঙ্গ আর বাংলাদেশের মাটি তো এক। তখনই শুরু করলাম রজনীগন্ধা দিয়ে"। শের আলী সরদার ও স্থানীয় অন্যদের ভাষ্যমতে এভাবে প্রায় চার দশক আগে ফুল চাষের যে যাত্রা শুরু হয়েছিলো তার এখন বিস্তার ঘটেছে পুরো অঞ্চল জুড়ে। এখন আসছে নিত্য নতুন জাতের ফুল। ফুল চাষ দেখতে আসা দুই জন শিক্ষার্থী। কোন ধরণের ফুল বেশি হয় গদখালীর যেকোনো দিকে তাকালেই চোখে পড়ে একটার পর একটা ফুলের বাগান। বিশেষ করে গোলাপ, গাঁদা আর অর্কিড, পাতাবাহার, রজনীগন্ধার বাগান রয়েছে অসংখ্য। এর বাইরেও চোখে পরে পলি হাউজ বা ফুল চাষের বিশেষ ঘর। এসব ঘরে হয় জারবার ফুলের চাষ যার চাহিদা এখন অনেক বেশি বেড়েছে বলে জানা শের আলী সরদার। স্থানীয় চাষিদের একজন শাজাহান কবীর বিবিসি বাংলাকে বলেন এসব ফুলের বাইরেও লিলিয়ামসহ নানা জাতের ফুল চাষ করছেন তারা। গদখালীতে ভারত ও চীন থেকে বিশেষজ্ঞ চাষীরা এসে স্থানীয় কৃষকদের সহায়তা করেন। বিদেশ থেকে আসছে বিশেষজ্ঞ চাষিরা গদখালীতে ফুল বাগান ঘুরে দেখার সময়ই দেখা হলো বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি মো: আব্দুর রহিমের সাথে। তিনি বলছেন, ভারত ও চীন থেকে বিশেষজ্ঞ চাষিদের আনা হচ্ছে স্থানীয় কৃষকদের সহায়তার জন্য বিশেষ করে পলি হাউজগুলো তৈরিতে সহায়তার জন্য। "ভারত ও চীন থেকে কৃষকরা আসেন আমাদের সহায়তায়। আবার বিএডিসি যে গবেষণা করে সেখানেও তারা সহায়তা করেন"। কৃষক শাজাহান কবীর বলেন, নিত্য নতুন জাতের ফুলের চাষের জন্য আলাদা জ্ঞানের দরকার হয় এবং সেটি তারা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে পাচ্ছেন। এর ফলে ফুলের বাজার এখন গোলাপ, গাঁদা আর রজনীগন্ধার ওপর নির্ভরশীল নেই। পাতা বাহার বাগান কৃষকরা কেমন লাভবান হচ্ছেন? ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিমের ভাষ্যমতে, ফুলের বাজার এখন প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার। প্রবীণ চাষি শের আলী সরদার বলছেন ধান ও পাটের চেয়ে ফুলেই বেশি লাভ আর এখন অনুষ্ঠান বা দিবস বেশি হয় বলে ফুলের চাহিদাও অনেকে বেড়েছে। শাজাহান কবীর বলেন, "সামনে ১৪ই ফেব্রুয়ারি আসছে। গ্রামের সবাই জানে তার আগেই প্রচুর ফুল সরবরাহ করতে হবে। সঙ্গত কারণেই দামও বাড়বে।" "আবার তার কদিন পরেই একুশে ফেব্রুয়ারি তখন ফুল লাগবে একেবারে তৃণমূল গ্রাম পর্যন্ত। এ ধরণের আরও কিছু দিবস আছে যেগুলোতে ফুলের ব্যবহার দিন দিন বাড়বে। তাই ফুল চাষে বিনিয়োগ নিরাপদ"। মিস্টার রহিম বলছেন, এসব বিষয় মাথায় রেখেই ফুল চাষ এবং নিত্য নতুন ফুলের জাত নিয়ে সরকারী বেসরকারি গবেষণাও শুরু হয়েছে। "আর এতসব উদ্যোগের কারণেই অন্য ফসলের চেয়ে ফুল চাষেই চার পাঁচ গুন বেশি লাভবান হচ্ছে কৃষকরা।" ফলে চাষিদের ফুল চাষে সম্পৃক্ত হওয়ার সংখ্যাও প্রতিবছরই বাড়ছে বলে মনে করেন তিনি। ফলে গদখালীর ফুলের সুবাসও ছড়িয়ে পড়ছে দেশ দেশান্তরে। বাংলাদেশের যশোর জেলার ঝিকরগাছার একটি এলাকা বিখ্যাত হয়ে উঠেছে ফুল চাষের কারণে। +text: সিঙ্গাপুরের শিক্ষাব্যবস্থা বরাবরই র‍্যাঙ্কিংয়ে খুব ভালো করে এসেছে। এখানকার সকল শিক্ষক জাতীয় শিক্ষা ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। স্কুলপর্যায়ে সিঙ্গাপুরের শিক্ষাব্যবস্থা, বিশেষ করে তাদের বিজ্ঞান শিক্ষা এতটাই ভালো যে এখন তাদের অনুসরণ করছে পশ্চিমা দেশগুলোও। কিভাবে তারা এতটা সফলভাবে তাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে গড়ে তুললো? বিবিসির সাংবাদিক গিয়েছিলেন মন্টসফোর্ড মাধ্যমিক স্কুলে। স্কুলটির বিজ্ঞানের শ্রেণীকক্ষটি দেখলে যতটা না স্কুলের ক্লাস মনে হবে, তার চেয়ে বেশি মনে হবে এটি বিজ্ঞানীদের একটি গবেষণাগার। স্কুলকক্ষটি ঘুরল দেখা যাবে কিশোর-কিশোরীরা এখানে নানা ইলেক্ট্রনিক্স জিনিস বানাচ্ছেন, যার মধ্যে ইলেক্ট্রিক কিবোর্ড থেকে শুরু করে বাগানে পানি দেয়ার স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা সবই আছে। স্কুলের চেষ্টা হচ্ছে আরো বেশি ব্যবহারিক শিক্ষা দেয়ার চেষ্টা করা। স্কুলের একটি কক্ষকে তারা নাম দিয়েছে প্রস্তুতকারকদের গবেষণাগার। শিশুরা এখানে যা তৈরি করবে, বানানো শেষে তারা চাইলে সেটি নিজেদের সাথে বাসায় নিয়ে যেতে পারবে। রুপি টাম্পিলুন নামে একজন শিক্ষক এই ব্যবস্থার পেছনের চিন্তার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলছিলেন "আমরা শিক্ষার্থীদের পাঠদান যতটা সম্ভব অকৃত্রিম রাখতে চাই। বাস্তব পৃথিবীর সাথে পাঠদানের যোগসূত্র থাকতে হবে।" "শিক্ষার্থীরা যদি আসল এবং বাস্তব জিনিস নিয়ে কাজ করবে তখন তারা তাদের প্রতিদিনকার জীবনের সাথে সেটা মেলাতে পারবে। এটা শুধু বিজ্ঞানে নয়, সবক্ষেত্রেই তাদের শেখার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে"। স্কুলে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা সিঙ্গাপুরের শিক্ষাব্যবস্থা বরাবরই র‍্যাঙ্কিংয়ে খুব ভালো করে এসেছে। এক্ষেত্রে দেশটির একটি বড় সুবিধা হলো, দেশটি খুবই ছোট এবং এখানকার সকল শিক্ষক জাতীয় শিক্ষা ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। সিঙ্গাপুরে জাতীয় শিক্ষা ইনস্টিটিউট বেশ প্রভাবশালী। সংস্থাটির পরিচালক, অধ্যাপক টান উন সাং বলছিলেন, তারা শুধুমাত্র সেরা শিক্ষার্থীদেরই নিয়ে থাকেন। কারণ, ক্লাসরুমের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের একটি মজবুত ভিত গড়ে দেয়া। "কোন শিশুকে যদি সুশিক্ষিত করতে হয়, তবে তাকে প্রথমেই ভাষার মৌলিক বিষয়গুলো শেখাতে হবে। সে বিভিন্ন বিষয় যাতে বুঝতে পারে এবং যোগাযোগ করতে পারে সেজন্য তাকে সেই বিষয়ের ব্যাকরণ শেখাতে হবে। এমনভাবে শেখাতে হবে যেন সে সেই ভাষাটি পড়তে পারে এবং বুঝতে পারে"। ক্লাসরুমে ১০ বছর বয়সী এক শিশু তার কাজ ব্যাখ্যা করছিলো। এটি সিঙ্গাপুর স্টাইলে অংকের ক্লাস। প্রত্যেকটি ধাপ সম্পূর্ণ আত্মস্থ করার পরই ক্লাসের সবাই পরবর্তী পাঠে যেতে পারবে। ক্লাস শেষে কিছু শিক্ষার্থী সংবাদদাতাকে তাদের পড়ালেখার ব্যবস্থা বোঝানোর জন্য থেকে গেল। মাত্র ১০ বছর বয়সেই তারা খুব সাবলীলভাবে ইংরেজী বলতে পারে। একটি শিশু বলছিল যে, কোন অংক করার সময় সেটা কিভাবে করতে হবে, কেন করতে হবে এবং আসল সমস্যার সাথে এর যোগসূত্র সবকিছু ভাবতে হবে। আরেকটি শিশু বলছিল, কোনকিছু কেনাকাটা করতে গেলে কত টাকা খরচ করতে হবে সেটি বুদ্ধি করে ব্যবহার করতে হবে। তাদের কথায় স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছিল, তারা অংক করা বেশ মজার কাজ বলেই মনে করে। অংক নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে উৎসাহ এবং তার প্রতি আগ্রহ সেটি খুবই প্রশংসনীয়। স্বাভাবিকভাবেই যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগুলোও এখন এই পদ্ধতি অনুসরণ করছে। সিঙ্গাপুর যে শিক্ষার ওপর দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করছে, বিশ্বব্যাপী তা ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করেছে। শিশুদের শিক্ষা দিচ্ছেন শিক্ষকরা "সিঙ্গাপুর যদি শিক্ষাব্যবস্থার একটি শক্তিশালী ভিত্তি দাঁড় করাতে না পারতো তাহলে আজ আমরা এই অবস্থায় আসতে পারতাম না। কোন কিছু যদি কাজ না করে তাহলে আমরা সেটাতে কিছু পরিবর্তন আনার চিন্তা করি। প্রতি ৫ বছর বা ১০ বছর পর আমরা বলি না যে, আমাদের পুরনো নীতি ভুল ছিল এবং এখন পুরো ব্যবস্থায় বড় ধরণের পরিবর্তন আনতে হবে"। শিক্ষাবিষয়ক গবেষণা সংস্থা হেড এডুকেশনের পরিচালক অধ্যাপক সারাভানন গোপীনাথন বলছেন, আন্তর্জাতিকভাবে কোন ব্যবস্থাগুলো কাজ করে তার অনেক উদাহরণ আছে এবং তারাও একসময় পশ্চিমা দেশগুলো থেকেই অনেক ধারণা নিয়েছেন। উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা ছাড়াও সিঙ্গাপুরের অভিভাবকরাও সন্তানদের শিক্ষার বিষয়ে খুবই সতর্ক। সন্তানদের শিক্ষার পেছনে সময় এবং অর্থ ব্যয়ে তারা যথেষ্ট আগ্রহী এবং এই কারণটিই সিঙ্গাপুরের শিক্ষাব্যবস্থাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পেছনে একটি বড় ভূমিকা রাখছে। যার ফলে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে তাদের দেশের অর্থনীতিও দিন দিন আরো সমৃদ্ধ হচ্ছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে যে, বিশ্বে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষাবিষয়ক আন্তর্জাতিক পরীক্ষায় সবচেয়ে ভাল ফলাফল করছে সিঙ্গাপুরের শিক্ষার্থীরা। +text: ইউজিন ক্যাসপারস্কি তার সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৯৭ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমস ও ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, রাশিয়ানরা তখন বিভিন্ন মার্কিন গোয়েন্দা কর্মসূচী সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করতে চাইছিল। কিন্তু ইসরায়েলি গোয়েন্দারা নিজেরাই যখন ওই সফটওয়্যারের গোপনীয়তা ভেদ করতে যায়, তারা রাশিয়ানদেরই তৎপরতার কথা জেনে যায়। ক্যাসপারস্কি অবশ্য বলেছে তাদের এই ধরনের কোনও ঘটনার কথা জা���া নেই। সংস্থাটি আরও দাবি করেছে, তারা এর সঙ্গে আদৌ জড়িত নয় বা রুশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও তাদের কোনও যোগসাজশ কখনও ছিল না। গত মাসেই মার্কিন প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে তাদের কোনও কম্পিউটারে ওই রুশ সংস্থার সফটওয়্যার আর ব্যবহার করা হবে না। জানা যাচ্ছে যে ইসরায়েলিরাই না কি মার্কিন প্রশাসনকে এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছিল, তার পরই ক্যাসপারস্কিকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আরো পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট: ‘আরসা’র সত্য অনুসন্ধানে বিবিসি ক্যাসপারস্কি বিশ্বের অন্যতম সেরা অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার নির্মাতা হিসেবে স্বীকৃত মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা এজেন্সি (এনএসএ)-র একজন কর্মী তার বাড়ির কম্পিউটারে ক্যাসপারস্কি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার বসিয়েছিলেন - তার বাড়ির কম্পিউটার থেকেই বহু গোপনীয় নথিপত্র চুরি হয়েছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। তবে এনএসএ, হোয়াইট হাউস বা ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাস এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেনি। নিউ ইয়র্ক টাইমস জানাচ্ছে, তারা রাশিয়ার দূতাবাসকে এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানাতে অনুরোধ করেছিল - কিন্তু তারা সেই অনুরোধের কোনও জবাব দেয়নি। আর ক্যাসপারস্কি সংস্থার পক্ষ থেকেএকটি বিবৃতি জারি করে এই গোটা ঘটনায় তাদের কোনও দায় নেই বলে দাবি করা হয়েছে। তারা বলছে ক্যাসপারস্কি এ বিষয়ে আদৌ অবহিত ছিল না। আমাদের পেজে আরও পড়ুন : 'মিয়ানমার চেয়েছিল রোহিঙ্গারা কখনও না ফিরুক' কীভাবে অ্যামাজনকে ৫০ লক্ষ টাকা ঠকাল দিল্লির যুবক অপ্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রীর সাথে যৌন সম্পর্কও ধর্ষণ: ভারতের আদালত মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, দুবছর আগে রাশিয়ান হ্যাকাররা যখন ক্যাসপারস্কি সাইবার সিকিওরিটি সফটওয়্যারের গোপনীয়তা ভেদ করছিল, তখন ইসরায়েলি গোয়েন্দারা নীরব দর্শক হয়ে ছিল। +text: ম্যারাথন সাঁতারু স্যারাহ টমাস। এই দুঃসাহসিক অভিযান তিনি শুরু করেন রবিবার সকালের দিকে। পরে এক নাগাড়ে ৫৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সাঁতার কাটেন তিনি। খোলা জায়গায় আল্ট্রা ম্যারাথন সাঁতারু হিসেবে পরিচিত স্যারাহ টমাস। স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। মাত্র এক বছর আগে তার চিকিৎসা শেষ হয়েছে। তার এই 'ইংলিশ চ্যানেল জয়' করার ঘটনাকে তিনি উৎসর্গ করেছেন ক্যান্সারের সাথে লড়াই করে যারা বেঁচে আছেন তাদের উদ্দেশ্যে। তার এই সাঁতার ৮০ মাইল দীর্��� হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তীব্র স্রোতের কারণে শেষ পর্যন্ত তাকে ১৩০ মাইলের মতো সাঁতরে পার হতে হয়েছে। রবিবার সকালে সাঁতার শুরু করে মিস টমাস মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ছ'টার দিকে সাঁতারের শেষ ধাপটি সম্পন্ন করেন। সাঁতার শেষ করে ডোভারে তীরে উঠে আসার পর বিবিসিকে তিনি বলেন, "আমি বিশ্বাস করতে পারছি না যে আমরা এটা করেছি।" "আমার সাথে দেখা করতে এবং আমি যাতে সফল হতে পারি সেই শুভ ইচ্ছার কথা জানাতে অনেকেই তীরে হাজির হয়েছেন। সত্যি কথা বলতে কী আমি নিজেই হতভম্ব হয়ে পড়েছি।" তিনি জানিয়েছেন, আজ মঙ্গলবার তিনি সারাদিন ঘুমাবেন বলে ভাবছেন। "সত্যিই আমার খুব ক্লান্ত লাগছে।" অনেকেই একে বিস্ময়কর এবং অতিমানবীয় ঘটনা হিসেবে দেখছেন। বড় বড় সাঁতারুরা বলছেন, মানুষ যখন মনে করছে যে তারা তাদের ক্ষমতার শেষ সীমায় পৌঁছে গেছে, তখনই সেসব রেকর্ড ভেঙে দেওয়া হলো। স্যারাহ টমাসের মা বলেছেন, তার মেয়ে একটু 'পাগলা' ধরনের। ইংলিশ চ্যানেল জয় করার সবশেষ এই অভিযানে তাকে পেট-ব্যথার সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। এর আগেও মিস টমাস ইংলিশ চ্যানেলে সাঁতার কেটেছেন। ২০১২ ও ২০১৬ সালেও তিনি চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন। কিন্তু সেটা যেন তার জন্যে যথেষ্ট ছিল না। স্যারাহ টমাসের সাঁতারের রুট আরো পড়তে পারেন: নদীতে সাঁতার কেটে প্রতিদিন অফিসে যান তিনি সাঁতার না জানলে ডিগ্রি দেবে না চীনা বিশ্ববিদ্যালয় "আমি যখন সাঁতার কেটে ২০ মাইল পার হয়েছি তখনই মনে হয়েছে যে আমি তো আরো দূরে যেতে পারি। সেই দূরত্বটা কতোখানি সেটাই আমি দেখতে চেয়েছিলাম।" ২০১৭ সালের অগাস্টে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সীমান্তে অবস্থিত লেক চ্যাম্পলেনে ১০৪.৬ মাইল সাঁতার কেটেছিলেন। কিন্তু তার পরেই তার দেহে ক্যান্সার ধরা পড়ে। মিস টমাস সাঁতার কেটে ইংল্যান্ড থেকে ফ্রান্সে যান, তারপর ফিরে আসেন। এর পর আবারও তিনি ফ্রান্সে যান এবং ফিরে আসেন। এজন্যে তার সময় লাগে ৫৪ ঘণ্টা। এর আগে মাত্র চারজন সাঁতারু একবারও না থেমে তিনবার চ্যানেলের এপার-ওপার করেছিলেন। মিস টমাস বলেন, ঢেউ কেটে কেটে সাঁতার করাই ছিল তার কাছে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। বড় বড় স্রোত তাকে ঠেলে দিচ্ছিল। কিন্তু তিনি জেলিফিশের মতো এগিয়ে গেছেন। আরেকটা বড় সমস্যা ছিল লবণাক্ত পানি। মুখের ভেতরে এই পানি ঢুকে পড়ায় গলা, মুখ ও জিহ্বায় ব্যথা করছিল। "শেষ বারের মতো যখন ফ্রান্স থেকে ফিরে আসছিল��ম তখন খুবই সমস্যা হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল যেন শেষই হচ্ছে না," বলেন তিনি। এই ৫৪ ঘণ্টা তিনি প্রোটিন-সমৃদ্ধ পানীয় পান করেছেন যা তার শরীরে পুষ্টির যোগান দিয়েছে। তার সাথে মেশানো হয়েছিল ইলেকট্রোলাইটস এবং সামান্য ক্যাফেইন যা তার ঘুম তাড়াতে সাহায্য করেছিল। আরো পড়তে পারেন: আফগান প্রেসিডেন্টের সমাবেশে বিস্ফোরণ: নিহত ২৪ গোপালগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে বহিষ্কার নিয়ে তোলপাড় যেভাবে গড়ে ওঠে দুর্ধর্ষ কিশোর অপরাধীদের দল ক্যান্সার থেকে বেঁচে যাওয়া এক নারী এই প্রথম কোন ধরনের বিরতি ছাড়াই সাঁতার কেটে ইংলিশ চ্যানেল চারবার পাড়ি দিয়েছেন। ৩৭ বছর বয়সী এই নারীর নাম স্যারাহ টমাস। +text: অনেক পুরুষ কনডম ব্যবহার করতে চান না। কিন্তু জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে দায়ভার কি শুধু নারীর? বাংলাদেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের ক্ষেত্রে পুরুষদের কতটা উৎসাহিত করা হচ্ছে? পুরুষরা কি বলছেন? জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করেন কিনা বা কি ব্যবহার করেন? এরকম কিছু প্রশ্ন নিয়ে ঢাকায় আজ বেশ কিছু পুরুষদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম। নাম ও পরিচয় প্রকাশ করতে চাইলেন না বেশিরভাগই। বনানী এলাকায় একজন গাড়ি চালকের সাথে কথা হচ্ছিলো। তিনি বলছেন, "আমার ওয়াইফ তো ই খায়, কি যেনও বলে, বড়ি খায়। আর আমার কোন পদ্ধতি নাই। আমি কোন পদ্ধতি নেই নাই। আমার ওয়াইফই ব্যবহার করে।" আরও কয়েকজনের সাথে কথা হচ্ছিলো। যাদের বেশিরভাগই বললেন জন্মনিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি ব্যবহারের মুল দায়িত্ব নারীদেরই। ব্যক্তিগত প্রশ্নের উত্তর দিতে সকলেই কিছুটা সংকোচ বোধ করছিলেন। মুখের ভাব বা কণ্ঠ শুনলেই সেটি বোঝা যাচ্ছিলো। কেন নারীদের দায়িত্ব বেশি তার পরিষ্কার ব্যাখ্যাও তারা দিতে পারলেন না। বাংলাদেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলোর মধ্যে ৭ শতাংশ রয়েছে কনডমের ব্যবহার। একজন নারীর অভিজ্ঞতা কিন্তু যে গুরুদায়িত্ব নারীরা পালন করছেন সে সম্পর্কে কথা বলছিলেন কিছুদিন আগে কপার টি ব্যাবহার শুরু করেছেন এমন একজন। তিনি বলছেন, "এটা পরার সময় কষ্ট হয়। পরার পরে প্রতি পরিয়ডের সময় পেটে ব্যথা হয়। খুব বেশিই হয়। সেটা কমাতে আমার পেইন কিলার খেতে হয়। আগে ব্যথাটা এতটা ছিল না। আরেকটা যেটা হল পিরিয়ড চলাকালীন ব্লিডিংটা বেশি হয়।" নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই নারীও। তিনি বলছেন, স্বামীর কনডম ব্যাবহারে অনিচ্ছার কারণেই তাকে কপার টি নিতে হয়েছে। "বেশিরভাগ সময় কনডম পরতে চায়না বলেই আমার এই অবস্থা। কিছু সময় আছে ব্যবহার করতে একটুও চাইবে না। কিছু সময় আমার কথা শুনে বাধ্য হয়।" সরকারের পরিকল্পনা কি? পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ২০১৮ সালের হিসেবে দেশে সক্ষম দম্পতিদের মধ্যে ৬৩ শতাংশ জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যাবহার করেন। প্রজননের হার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় এগিয়ে রয়েছে। কিন্তু দেশে পাওয়া যায় এমন যেসব পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহার করেন দম্পতিরা তার দুটি ছাড়া সবই নারীদের জন্য। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড. আশরাফুন্নেসা বলছেন পুরুষদেরও এর দায়িত্ব নিতে হবে। এসব হারই বলে দেয়া পরিবার পরিকল্পনা পুরুষদের অংশগ্রহণ কতটা। তিনি বলছেন, "পরিবারে পুরুষ প্রধানকেই সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করা উচিৎ কারণ একজন নারী বাচ্চা বহন করে, বাচ্চা লালন পালন করে, ব্রেষ্ট ফিডিং করে। সে কিন্তু এসব ভূমিকা ইতিমধ্যেই পালন করছে। এখন জন্ম নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে যদি পুরুষরা এগিয়ে আসে তাহলে আমার মনে হয় নারী আরও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে এবং কর্মক্ষেত্রেও কিন্তু নারীর অংশগ্রহণ বেড়ে যাবে।" তিনি নিজেই বলছেন, "পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণের হার কম। আমরা এখন জোর দিচ্ছি শুধু নারী নয়, নারীর পাশাপাশি পুরুষকেও জন্মনিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসতে হবে।" জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যাবহারে পুরুষদের হার কতটা? কিন্তু জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ড ও প্রচারণা কোন কিছুতেই তার কথার প্রতিফলন দেখা যায় না। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সরকারি প্রচার প্রচারণাতেও নারীদেরই টার্গেট করা হচ্ছে। আরো পড়ুন: পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি: কেন আজও বাজারে আসেনি? জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে পুরুষদের ভাবনা বাংলাদেশে কীভাবে বেড়েছে গড় আয়ু? বাংলাদেশে বাড়ছে নারী প্রধান পরিবার পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে বাংলাদেশে যেসব পদ্ধতি এখন ব্যবহার হচ্ছে সেগুলো হল জন্ম বিরতিকরন খাবার বড়ি, কপার টি, জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন, লাইগেশন, চামড়ার নিচে বসিয়ে দেয়া জন্মনিয়ন্ত্রণ ক্যাপসুল, কনডম ও ভ্যাসেকটমি। খাবার বড়ির ব্যবহার সবগুলো পদ্ধতির মধ্যে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ। ইনজেকশন ১১ শতাংশ। সেই হিসেবে পুরুষ��ের জন্য মোটে দুটি যে পদ্ধতির তার মধ্যে কনডমের ব্যবহার হচ্ছে মোটে ৭ শতাংশ। পুরুষদের ভ্যাসেকটমির করার হার মোটে ১ শতাংশ। এসব হারই বলে দেয়া পরিবার পরিকল্পনা পুরুষদের অংশগ্রহণ কতটা। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড. আশরাফুন্নেসা বলছেন পুরুষদেরও দায়িত্ব নিতে হবে। নারীদের জন্য যেসব পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে যেসব পদ্ধতি নারীদের জন্য রয়েছে তার অনেকগুলোরই রয়েছে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরই তার প্রচারণায় এসব পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে তথ্য দিয়ে থাকে। যেমন কপার টি ব্যবহার করলে তলপেটে ব্যথা হতে পারে, নিয়মিত ফোটা ফোট রক্তস্রাব হতে পারে। অনেক সময় প্রদাহ হতে পারে। চামড়ার নিচে বসিয়ে দেয়া জন্মনিয়ন্ত্রণ ক্যাপসুলে মাসিক অনিয়মিত অথবা উল্টো আবার রক্তস্রাব বেশি হতে পারে। মাথা ব্যথা হতে পারে। ওজন বেড়ে যেতে পারে। ইনজেকশনেও একই ধরনের সমস্যা হয় ব্যবহারকারী নারীদের। খাবার বড়ি হরমোনে প্রভাব ফেলে। মাসিকের পরিমাণ কমে যায়। যোনিপথ শুষ্ক হয়ে যায়। এসব অসুবিধা সহ্য করেই নারীদের জন্ম নিয়ন্ত্রণের দায়ভার বহন করতে হয়। জন্মনিয়ন্ত্রণের প্রচারণার সময় অসুবিধাগুলো কমই জানানো হয়। বরং সুবিধাগুলোর প্রচারণাই বেশি। পুরুষদের কিভাবে এতে উৎসাহিত করা যায়? বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন উন্নয়ন বিকল্পের নীতিনির্ধারণী গবেষণা, উবিনিগের নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আক্তার। তিনি বলছেন সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় নিতিমালা দুটো ক্ষেত্রেই নারীকে এই দায়ভার দিয়ে দেয়া হচ্ছে। ইদানীং কিছু পরিবর্তন হলেও বিশ্বব্যাপী জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির কার্যকারিতা ও নতুন পদ্ধতি আবিষ্কারের ক্ষেত্রে গবেষণাও হয়েছে নারীর শরীর মাথায় রেখে। ফরিদা আক্তার বলছেন সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় নিতিমালা দুটোতেই নারীকেই দায়ভার দিয়ে দেয়া হচ্ছে। ফরিদা আক্তার বলছেন, "আপনি যদি জন্ম নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিগুলো দেখেন কনডম এবং মেল স্টেরিলাইজেশন ছাড়া বাকি বড়ি থেকে শুরু করে, আইইউডি, ইনজেকটেবল ইমপ্ল্যান্ট সব কিন্তু মহিলাদের শরীরে করা হচ্ছে। পুরুষ যদি সন্তান চায় নারীকে দিতেই হবে। আবার সরকার বা রাষ্ট্র যখন ঠিক করে যে না সন্তান বেশি নেয়া যাবে না সেটাও নারীর শরীরেই একটা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে বন্ধ করা হয়।" তিনি আরও বলছেন, "নারীর শরীরেই সন্তান হয় ফরে নারীর শরীরকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এই দিক থেকে চিন্তা করে যেহেতু কন্ট্রাসেপটিভ তৈরি হচ্ছে সেজন্যে এটি নারীর শরীর কেন্দ্রিক হয়ে গেছে।" তার মতে, "পুরুষের অংশগ্রহণ বাড়াতে হলে নারীকে তারা শুধু সন্তান জন্মদানের একটা মেশিন হিসেবে ভাবলে চলবে না। সন্তান ধারণে নারী ও পুরুষের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সমতা অর্জন করা। সেটি যদি হয় তাহলে পুরুষ অবশ্যই নিজ দায়িত্বে পদ্ধতি গ্রহণ করবেন।" তিনি বলছেন, নারীকেই সে ব্যাপারে দায়িত্ব নিতে হবে এমন চিন্তা থেকে সরে আসতে হবে। অন্যান্য খবর: কোহলির অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন সাচিন, সৌরভের চিনিযুক্ত পানীয় কি ক্যান্সারের কারণ? ব্রিটিশ ট্যাংকার 'আটকের চেষ্টা চালালো ইরান' বাংলাদেশে জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য যেসব পদ্ধতি রয়েছে তার মধ্যে মোটে ৭ শতাংশ রয়েছে কনডমের ব্যবহার। দেশে যত ধরনের পদ্ধতি রয়েছে তার দুটি ছাড়া সবই নারীদের জন্য। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সরকারি প্রচার প্রচারণাতেও নারীদেরই টার্গেট করা হচ্ছে। +text: এক নারী সিএনজি যাত্রীকে হয়রানির ভিডিও আপলোড করে পুলিশ নিজেই তবে সম্প্রতি রাজধানীর একটি চেকপোস্টে রাতের বেলা সিএনজি অটোরিক্সা থামিয়ে এক নারী আরোহীকে পুলিশের হয়রানির ভিডিও বিষয়টিতে নতুন করে আলোচনায় আনে। পুলিশেরই তোলা ওই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হবার পর তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঐ ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে এবং তাদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে, পুলিশি তৎপরতার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশ করা হয়েছে। এই ধরণের আচরণ কতটা আইনসম্মত তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে বিবিসি সাধারণ মানুষের কাছে জানতে চান কখনও তাদের এ ধরণের হয়রানির মুখে পড়তে হয়েছিল কিনা। এরপর বিবিসির কাছে বিপুল সংখ্যক লোক তাদের হয়রানির অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। তারা জানান, কীভাবে তল্লাসির নামে তাদের চেকপোস্টে তাদের হয়রানি করা হয়েছে। অসৌজন্যমূলক ও বিব্রতকর প্রশ্নের পাশাপাশি গায়ে হাত তোলার কথাও বলেছেন কেউ কেউ। অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ বা আনসার কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতিতে কনস্টেবল বা তাদের সমমানের যারা সেখানে কাজ করেন, তারা অনেক সময় উদ্দেশ্যমূলকভাবেও য���ত্রীদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। শরীফ নামে একজন বিবিসিকে যে অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন তা রীতিমত ভয়াবহ। তিনি লিখেছেন, "আব্দুল্লাহপুর পুলিশ চেকপোস্টে সিগন্যাল দিল থামার জন্য। সাথে-সাথে‌ই থেমে যাই। পুলিশ কর্মকর্তা‌ বললেন আমাদের ব্যাগ চেক করবেন। আমি বললাম ঠিক আছে ভাই, চেক করেন তবে একটু তাড়াতাড়ি করবেন। এই কথা বলার পর ঐ পুলিশ সদস্য আমাকে সবার সামনে শার্টের কলার ধরে টানতে টানতে তাদের রুমের ভেতর মানে পুলিশ বক্সের ভিতর নিয়ে মুহূর্তের মধ্যেই লাথি, ঘুষি মারতে শুরু করে। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। অবশেষে আমার কি অপরাধ তা আমি না বোঝা সত্ত্বেও তার পা ধরে কান্নাকাটি করে মুক্তি পেয়েছিলাম। ঐ ঘটনার কথা মনে হলে এখনো আমার গা শিউরে উঠে।" আরও পড়তে পারেন: চার যুবকের হত্যাকাণ্ডে বিভ্রান্ত পরিবার, পুলিশ ভারতীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ 'ফিসফিসানি' ছেড়ে যখন সরব নারী সাংবাদিকরা চেকপোস্টে হয়রানির ঘটনা নতুন কোন বিষয় নয়। হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন মনির নামে আরেকজন। তিনি লেখেন: "আমাকে তল্লাশি করে কিছু পায়নি। প্রায় ১ ঘণ্টার উপরে টহল গাড়িতে ঘুরিয়ে, আপত্তিকর নানা প্রশ্ন করতে থাকে! এক পর্যায়ে আমার কাছে কেনাকাটা করার জন্যে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা ছিল, তা তারা নিয়ে যায়। আমি অসহায়ত্ব মনে বাসার পথে হাটা ধরি! এখনো কোথাও পুলিশের কাছে সহযোগিতা আশা করি না বরং এড়িয়ে চলি।" চেকপোস্টে বিরূপ অভিজ্ঞতা রয়েছে মাহমুদুল হাসানেরও। তিনি লিখেছেন, "আমার মোবাইল এবং জাতীয় পরিচয়পত্র চাইলো। আমি প্রশ্ন করা মাত্রই বলল, আমি নেশা করে আসছি। তাই আমার সাথে কথা বলবে না, আমার বাসার সাথে কথা বলবে। বলে রাখা ভালো, আমার আব্বু হার্টের রুগী। আমি তাদেরকে অ্যালকোহল ডিটেক্টরের এর কথাও বলি। কিন্তু তারা বাসায় কথা বলবেই। পরে আমি বাধ্য হয়েই বাসায় ফোন দেই। কিন্তু তখন আর তারা কথা বলবে না। তারা বলে, হুদাই বাসায় ফোন দিয়ে লাভ কি। কিছু খরচাপাতি দিয়ে দেন। এত রাত হইছে, চা-বিড়ি খেতে হবে। আমিও নিরুপায়। তারা অনেক খারাপ ভাষায় গালাগালি করছিলো এবং টুকটাক হুমকি দিচ্ছিল।" ফেসবুক কমেন্টে নাফিসা ইয়াসমিন নামে একজন জানান, "ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়াকালীন সময়ে কয়েকজন বান্ধবী মিলে মার্কেটে যাচ্ছিলাম বই কিনতে। কিছু পুলিশ,'আপুরা চলেন না সবাই মিলে সেল্ফি তুলি' এছাড়াও আরো না���া ধরনের প্রশ্ন করছিলো অযথাই। সব দেশে পুলিশ আশ্রয় এর নাম, এই দেশে পুরাই বিপরীত।" প্রায় একই ধরণের অভিযোগ করেন এলিজাবেথ এস, নামে আরেক জন। তিনি জানান, "এদের পাস করার সময় একেকজনের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ/আই মোশন চেঞ্জ হয়ে যায়, ‌অ্যান্ড দ্য চেইঞ্জিং ইজ নট পজিটিভ অ্যাট অল।" মহাখালীতে মোটরবাইক ও গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে পুলিশ। এ ব্যাপারে নাজমুস সাকিব নামে একজন বলেন, "আমার মতে মেয়েদের তল্লাশি চালানোর সময় মহিলা পুলিশ এর প্রয়োজন মনে করছি।" গভীর ক্ষোভ জানিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, "বিনা অপরাধে আমাদের কেই এভাবে হ্যারাস করবেন এটা তো কোনও বাহিনীর কাজ হতে পারে না! আর কাল একটা মেয়ের সাথে পুলিশ যা করলো সেটা দেখে মনে হল পুলিশ হলেই রাস্তায় যা খুশি তা ই করা সম্ভব! পুলিশ কিভাবে জনগণ এর বন্ধু হয়?" এছাড়া দম্পতিদের দেখলে আপত্তিকর মন্তব্য করা, মোবাইল বা অন্য কোন পণ্য রেখে দেয়া, ঘুষ নেয়াসহ আরও নানা হয়রানির কথা বিবিসিকে জানিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। হয়রানির শিকার হলে কার কাছে যাবেন? সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে ওই নারীকে হয়রানির কারণে রামপুরা থানার এক সহকারী উপ-পরিদর্শকসহ (এএসআই) তিন পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে আছে বলে জানা গেছে। তবে এ ধরণের ঘটনার সম্মুখিন হলে কি করবেন? এ বিষয়ে জানতে কথা হয়েছিল বাংলাদেশ পুলিশের মুখপাত্র সোহেল রানার সঙ্গে। তিনি ৫টি উপায়ের কথা তুলে ধরেন। সবশেষে, কোন ভুক্তভোগী যদি মনে করেন যে এই অভিযোগ দায়েরের পরও তিনি ন্যায়বিচার পাননি, তাহলে তিনি অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পুলিশ সদর দফতরে আইজিপি কমপ্লেইন মনিটরিং নামে একটি সেল রয়েছে, সেখানে অভিযোগ করতে পারেন - বলেন পুলিশ মুখপাত্র। ঢাকার বিভিন্ন এলাকার তল্লাশি চৌকিতে নিরাপত্তার নামে পুলিশের হয়রানির অভিযোগ নতুন কিছু নয়। +text: সোর্সের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই অনেক সময় অভিযান চালায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যে দুজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে তারা মূলত পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করছিলেন। বাংলাদেশে নানা ঘটনায় প্রায়শই আলোচনায় আসে পুলিশের সোর্স বা অনুচররা। মানবাধিকার কর্মীরা অভিযোগ করেন অনেক সময়ই পুলিশের সোর্সরা নিজ স্বার্থে পুলিশকে ব্যবহার করে । আবার অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ সোর্সদের ওপর এতো বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে যে তাদের দেয়া তথ্য যাচাই না করেই অভিযান চালায় যাতে অনেক নিরীহ মানুষ বড় ধরণের ক্ষতির শিকার হয়। পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান বলছেন সোর্সদের দেয়া তথ্য যাচাই করেই পুলিশকে এগুতে হয়, তবে অনেক সময় নিজেই সঠিক তদন্তের প্রয়োজনে সোর্স নিয়োগ করতে হয় কর্মকর্তাদের। তিনি বলেন, "আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে সোর্স বা ইনফরমার থাকা অপরিহার্য। এটা ছাড়া তো কাজ করা যাবেনা। অনেক সময় সোর্সদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠলে সেটারও তদন্ত হয়"। তবে মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন বলছেন সুনির্দিষ্ট কোনো বিধি বা প্রবিধান না থাকায় পুলিশের সোর্স বিষয়টি জবাবদিহিতার বাইরে থেকে যায়। "তাদের তথ্য পাওয়ার জন্য ব্যবহার করার বদলে অনেক সময় ক্ষমতা প্রদর্শন বা ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করা হয়। আবার এই সুযোগে সোর্সরাও অনেকে পুলিশকে ব্যবহার করে ফেলে। পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে অপরাধমূলক কাজের অভিযোগও অনেক সোর্সের বিরুদ্ধে উঠেছে," বলছিলেন মিস্টার খান। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: বাংলাদেশে পুলিশের সোর্সদের দাপট নিয়ে প্রশ্ন উঠছে 'থানার বাইরেই ভাইয়ের কান্না শুনতে পাইতেছিলাম' হেফাজতে নির্যাতন প্রতিরোধ আইন কতটা কার্যকর? এডিটার'স মেইলবক্স: ক্রসফায়ার 'সংস্কৃতি' এবং বিপজ্জনক রাসায়নিক নিয়ে প্রশ্ন পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন সোর্স তৈরি বা নিয়োগ একান্তই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নিজস্ব বিষয় পুলিশের সোর্স কারা হয়? মোখলেসুর রহমান বলছেন এটা পুরোটাই নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কৌশলের ওপর। "গোপন সংবাদ বের করাই মূল উদ্দেশ্য থাকে। এক্ষেত্রে একজন সাধারণ মানুষও সোর্স হতে পারে। আবার কোনো বিজ্ঞজনও হতে পারেন সোর্স। আবার কখনো কখনো কোনো ঘটনা বা চক্রে জড়িত কাউকেও সোর্স করা যেতে পারে। তবে এটি পুরোটাই নির্ভর করে কর্মকর্তার দক্ষতা বা কৌশলের ওপর"। মিস্টার রহমান বলেন পুলিশ কর্মকর্তার যদি যথাযথ কানেকশন না থাকে তাহলে তিনি তো কাজ করতে পারবেননা এবং কোনো তথ্যও উদঘাটন তিনি করতে পারবেননা। ঢাকায় সার্জেন্ট হিসেবে কাজ করেন এমন একজন কর্মকর্তা বলছেন, "ধরুন মাদক ব্যবসার তথ্য তো আমরা এমনি পাবোনা। সেখানে আমার সোর্স লাগবে। আবার বড় ক্রাইম হলে আমরা চেষ্টা করি তাদের মধ্যেই একজনকে সেট করতে। সেক্ষেত্রে তাকে হয়ত�� আর্থিক সুবিধা দিয়ে তথ্য নেই"। অর্থাৎ অপরাধ ও অপরাধীদের তথ্য সংগ্রহে নিজেদের উদ্যোগেই বিভিন্ন ব্যক্তিকে সোর্স হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন পুলিশ কর্মকর্তারা। "কিছু সোর্স আছে খারাপ জগতের। অনেকে আছেন পেশাদার সোর্স যারা খবর দিয়ে টাকা নেয়। একটা মার্ডার হলো তখন হয়তো ঘটনার আশেপাশের কাউকে টাকার বিনিময়ে সেট করলাম খবর দেয়ার জন্য," বলছিলেন ঢাকার ওই কর্মকর্তা। পুলিশ কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য মতে সাধারণত রাজনৈতিক দলের কর্মী, বিভিন্ন ছোট অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি, জেল থেকে ছাড়া পাওয়া আসামি, স্থানীয় বাসিন্দা, বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিসহ সাধারণ মানুষকে পুলিশ সোর্স হিসেবে ব্যবহার করে। আবার এদের অনেককে তথ্যের বিনিময়ে টাকা দিতে হয়, যা সোর্স মানি হিসেবে পরিচিত। যদিও কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে যখন এই টাকা দেওয়া হয়, তখন তাকে 'অপারেশন মানি' হিসেবে বলা হয়ে থাকে। সোর্স নিয়োগে কোনো নিয়ম নীতি আছে? মোখলেসুর রহমান বলছেন সে ধরণের কোনো নিয়ম নীতি নেই এবং এটি সম্পূর্ণ গোয়েন্দা কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যবহৃত হয় বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার ওপর নির্ভর করে তিনি কিভাবে কাকে সোর্স বানাচ্ছেন। "তবে গোয়েন্দা কাজ করতে কিছু অর্থ কড়ি দেয়া হয়। সোর্স মানি হিসেবে যেটি ব্যবহার করা যেতে পারে," বলছেন তিনি। প্রসঙ্গত ২০১৯ সালের পুলিশ সপ্তাহে ঢাকায় পুলিশ কর্মকর্তাদের বৈঠকে সোর্স মানির বিষয়টি উঠে এসেছিলো বলে কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। ঢাকার আরেকজন পুলিশ কর্মকর্তা বলছেন নির্দিষ্ট কোনো নিয়ম নীতি না থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা যেখানে যে বিষয়ে কাজ করেন সেখানে সোর্স তৈরি করেন যাতে করে দরকারি তথ্য তিনি পান। "এটা একেবারেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়। কখনো কখনো কোনো বিশেষ কারণে তিনি তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারেন যে সোর্স হিসেবে কার সাথে কাজে যাচ্ছেন বা কোনো অপারেশনে যাচ্ছেন। কিন্তু এটা নিতান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তিনি প্রয়োজন মনে করলে জানাবেন। না হলে নাই"। যদিও ঢাকার একটি থানায় কর্মরত একজন এসআই পদমর্যাদার কর্মকর্তা বলছেন সোর্স নিয়োগের একটা নীতিমালা আছে তবে তারা অনুমোদিত সোর্স যারা রাষ্ট্রের টাকা পান। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার রেডবুকে (গোপনীয় নথি যা পুলিশ সুপার থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দেখতে পারেন) এ সম্পর্কিত তথ্�� থাকে। তবে ব্যক্তি সোর্স নিতান্তই পুলিশ কর্মকর্তার ব্যক্তিগত বিশ্বস্ততা ও যোগাযোগ বা বোঝাপড়ার মাধ্যমে গড়ে ওঠে, বলছিলেন তিনি। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় একটি জেলায় কর্মরত একজন পুলিশ কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে বলেন পুলিশ কর্মকর্তাকে যিনি তথ্য দিবেন তার নাম পরিচয় প্রকাশ করা যায়না। মিস্টার রহমান বলেন, "সোর্স বা ইনফরমার নানা ধরনের হয়ে থাকে এটি সত্যি। কিন্তু আমাদের কর্মকর্তারা তারা তাদের নিয়ে কাজ করেন তারা এসব ব্যক্তিদের নাম পরিচয় প্রকাশ করতে পারেননা।" "মনে রাখতে হবে সে হয়তো আমাদের এমন তথ্য দিচ্ছেন যা বড় কোনো অপরাধ প্রতিরোধে সহায়তা করছে বা অপরাধীকে ধরতে সহায়তা করছে"। ২০১৪ সালে পুলিশের হেফাজতে জনি নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ৫ জন আসামীর মধ্যে তিন জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। অপর দুই জনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। +text: আপনার সন্তান কেবল দুরন্ত নাকি মানসিক সমস্যাগস্ত সেটা জানার চেষ্টা করুন। সেক্ষেত্রে কিভাবে বুঝবেন যে আপনার কেবল "দুষ্টু" নাকি তার এই অস্থির আচরণের পেছনে মানসিক অসুস্থতাই মূল কারণ? শিশুরা কেন চিৎকার চেঁচামেচি করে? এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিতে যুক্তরাজ্যের মেন্টাল হেলথ ফাউন্ডেশন সম্প্রতি ১০ থেকে ১৫ বছর বয়সী এক হাজার ৩২৩ জনের ওপর জরিপ পরিচালনা করে। সেখান থেকে জানা যায় যে, শিশুদের আচরণ তখনই পরিবর্তন হয় যখন তারা দুশ্চিন্তা বা মন খারাপের মধ্যে থাকে। জরিপে অংশগ্রহণকারী এক চতুর্থাংশের দাবি যে তারা যখন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে বা মন খারাপ থাকে তখন তারা মারামারি বা ঝগড়াঝাঁটিতে জড়িয়ে পড়ে। বাকি আরও এক চতুর্থাংশ বলেছে মানসিক চাপে থাকলে তাদের হোমওয়ার্ক করাটা অনেক কঠিন হয়ে যায়। "যেসব শিশু সহজেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। তাদের জন্য যেকোনো নতুন, অপরিচিত, কঠিন বা চাপযুক্ত জায়গা সম্ভাব্য হুমকি হিসাবে বিবেচিত হবে।" "যখন শিশুরা মানসিক চাপে থাকে বা কোন হুমকি অনুভব করে। তখন তাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণে হরমোন এবং অ্যাড্রেনালিনের সৃষ্টি হয়। যার কারণে তাদের শরীর শক্তিশালী, দ্রুতগামী ও ক্ষমতাবান হয়ে ওঠে এবং তারা তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায়। এবং এই প্রতিক্রিয়া একপর্যায়ে প্রাকৃতিক-ভাবেই মিলিয়ে যায়।" এতে সহজেই বোঝা যায় যে, অল্প বয়সীদের মানসিক উদ্বিগ্নতা কিভাবে খেলার মাঠের ��াতাহাতি অথবা রাগের বিস্ফোরণে পরিণত হতে পারে। অল্প বয়সীদের মানসিক উদ্বিগ্নতা ‌এক পর্যায়ে হাতাহাতি অথবা রাগের বিস্ফোরণে পরিণত হতে পারে। আরো পড়তে পারেন: খাসোগজি হত্যার কথা স্বীকার করেছে সৌদি আরব ৎ মহাকাশে এবার 'মেইড ইন চায়না' নকল চাঁদ! ঐক্যফ্রন্টের বিরুদ্ধে কেন আক্রমণাত্মক আওয়ামী লীগ? নতুন জোট থেকে কী লাভ হবে বিএনপির খারাপ আচরণ মানেই কি মানসিক সমস্যা? শেফিল্ডের ওয়েলস হাই স্কুলের নির্বাহী প্রধান শিক্ষক পেপ ডি'আসিও বলেন, "শিক্ষার্থীরা কখনোই স্কুলে এসে এটা বলে না যে, 'আজ আমি খারাপ আচরণ করতে যাচ্ছি," । এই আচরণগত সমস্যার পেছনে অবশ্যই কোন না কোন কারণ রয়েছে। এসব কারণ জানতে যাচাই করে নিতে হবে শিশুর পেছনের জীবনের কিছুটা ঘটনা। খারাপ আচরণ প্রকাশ মানেই যে সে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার আক্রান্ত এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই। এ ব্যাপারে মনরোগবিদ ক্যরেন ইয়াং জানিয়েছেন, মানসিক উদ্বিগ্নতা, সুস্থ মস্তিষ্কের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া থেকে সৃষ্টি হতে পারে। তাদের এমন প্রতিক্রিয়া সুস্থ মস্তিষ্কেরই কাজ। তবে এটাও ঠিক যে, খারাপ আচরণের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতির যোগসূত্র রয়েছে। "কারো যদি কোন সহায়তার প্রয়োজন হয় এবং সঠিক সময়ে যদি সে সেই সাহায্য না পায় তাহলে সেটা ব্যক্তির আচরণকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।" রাগের বহি:প্রকাশ ছেলে ও মেয়েদের কি সমান? রাগের প্রতিক্রিয়া সাধারণত মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের বেশি হয়ে থাকে। কেননা ছেলেদের নানা জায়গায় বাধার মুখে পড়ার হার মেয়েদের চেয়ে বেশি। "ছেলেরা স্বভাবতই তাদের আচরণের বহি:প্রকাশ ঘটায়। তারা লড়াই বা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এবং তাদের হতাশা সহজেই আঁচ করা যায়। "অন্যদিকে মেয়েরা তাদের অনুভূতিকে স্বভাবতই দাবিয়ে রাখে। - তারা শুধু একা থাকতে চায়।" যারা বিক্ষিপ্ত আচরণ করে তাদের ওপর অনেক সময় খারাপ মানুষের লেবেল জুড়ে দেয়া হয়। কখন বুঝবেন এটা মানসিক সমস্যা? করণীয় কি? সাধারণত যেসব ছেলে বিক্ষিপ্ত আচরণ করে তাদের ওপর অনেক সময় খারাপ ছেলের লেবেল জুড়ে দেয়া হয়। সুতরাং বাবা-মা এবং শিক্ষকরা কীভাবে বুঝতে পারবেন যে তাদের বাচ্চার খারাপ আচরণ সীমা অতিক্রম করছে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে মোড় নিয়েছে? দাতব্য ওয়েবসাইট মেন্টালি হেলদি স্কুলসের মতে, বাচ্চাদের আচরণ থেকেই জানা যায় যে ত��রা কিভাবে নিজেদের গোপন সমস্যা বা দুর্দশার সঙ্গে মানিয়ে চলছে। তাই এটা বোঝা জরুরি যে শিশুটি তার আচরণের মাধ্যমে আপনাকে কিছু বলার চেষ্টা করছে কিনা। এ ব্যাপারে প্রাক্তন শিক্ষক ব্রেন্ডা ম্যাকহিউ জানান, "আমাদের স্কুলে একবার ১০ বছর বয়সী একটা ছেলে বলেছিল যে সে মনে করতো যে সবাই তাকে 'মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা আক্রান্ত কড়া ছাত্র' হিসাবে দেখে। "কিন্তু সে নিজেকে একজন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মানুষ হিসাবে বর্ণনা করে - যার সঙ্গে তার মায়ের শারীরিক স্বাস্থ্য এবং ঘন ঘন হাসপাতালে ভর্তি থাকা যুক্ত - সে জানেনা এ বিষয়ে সে কিভাবে কথা বলবে বা পরিস্থিতি কিভাবে সামলাবে।" ওয়েস্টমিনস্টারের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আচরণগত সমস্যায় আক্রান্ত ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সী মেয়েদের ওপর একটি ছোট জরিপ চালানো হয়। এই মেয়েরা নিজেদেরকে উদ্বেগ-জনিত সমস্যায় আক্রান্ত বলে বর্ণনা করলেও শিক্ষকরা তাদের "বিক্ষিপ্ত মানসিকতার" বলে লেবেল জুড়ে দেয়। আরও পড়তে পারেন: 'মানসিক চাপ' সামলাতে ঢাকায় কী ব্যবস্থা আছে? মানসিক রোগীকে কীভাবে সাহায্য করতে পারেন শরীরচর্চায় মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় এক্ষেত্রে স্কুলগুলোর মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। তারা বলেন, "আমরা যদি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলি প্রাথমিক অবস্থায় মোকাবিলা না করি, তাহলে পরবর্তী প্রজন্ম তাদের জীবনের শুরু থেকে ব্যর্থতার ঝুঁকিতে থাকবে।" অতিরিক্ত রাগান্বিত শিশুরা সাধারণত একটা দ্বন্দ্বে ভোগে যে তারা কাকে বিশ্বাস করবে? এসব শিশুর মেজাজ পরীক্ষা করে দেখা যায় যে, তাদের বেশিরভাগের আবেগ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা খুবই কম। এজন্য তারা চাইলেও একে নিজের আয়ত্তে রাখতে পারেনা। এ কারণে এক পর্যায়ে তারা মানুষের সঙ্গে স্বাভাবিক যোগাযোগের ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলে তাই যদি এই আচরণগুলো সময়ের সাথে চলতেই থাকে এবং মেজাজ প্রকাশের স্বাভাবিক সীমা অতিক্রমকে তারা আর পরোয়া করেনা। সেই-সঙ্গে যে আচরণ তাদের বিকাশ এবং জীবনের সম্ভাবনার পথে বিপদ ডেকে আনে। তখন এই বিষয়টিকে খতিয়ে দেখা জরুরি বলে মনে করেন গবেষকরা। নিজ থেকে সমস্যা আঁচ করার চেষ্টা করুন। কন্ডাক্ট ডিসঅর্ডার মানসিক অসুস্থতা বলতে কেবল কান্নায় ভেঙে পড়া, নিজেকে সবার থেকে আলাদা করে ফেলা বা নিজেকে আঘাত করা বোঝায় না। মেন্টাল হেলথ ফাউন্ডেশনের পরিচালক ডাক্তার অ্��ান্টনিস কৌসৌলিস বলেছেন, অল্প বয়সীদের যারা এ ধরণের আচরণগত মানসিক সমস্যায় ভুগছে। তাদের ক্ষেত্রে প্রায়ই একটা প্রশ্ন ওঠে যে, "তারা কি নিজেরা সমস্যাগ্রস্ত নাকি তারা কোন সমস্যার মধ্যে আছে?" গুরুতর এবং স্থায়ী আচরণগত সমস্যা ডাক্তারি ভাষায় কন্ডাক্ট ডিসঅর্ডার হিসাবে পরিচিত - যেটা শৈশবের সাধারণ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর একটি। শিশুর কন্ডাক্ট ডিসঅর্ডার থাকার কয়েকটি লক্ষণ: মিস ম্যাকহিউ জানান, "এটি এমন একটি সমস্যা যা দীর্ঘসময় ধরেই চলে আসছে।" তবে কখন এটি স্বাভাবিক আচরণ এবং কখন এটি রোগের উপসর্গ? সেটা ধরতে পারা খুব কঠিন বলে তিনি জানান। এক্ষেত্রে শিশুর বাজে আচরণের হার কেমন সেটা বের করাই আসল কাজ বলে তিনি জানান। শিশুদের প্রতিনিয়ত রাগান্বিত বা আক্রমণাত্মক আচরণ সহ্য করা বাবা-মা অথবা শিক্ষক কারও জন্যই স্বাভাবিক বা সুখকর অভিজ্ঞতা নয়। তাদের এই আবেগের বহি:প্রকাশ যদি বাড়ির বাইরে হয় তাহলে এর পরিণতি ওই শিশুর জন্য আরও গুরুতর হতে পারে। +text: অনন্ত জলিলের ভিডিও নিয়ে সমালোচনা হয় ফেসবুকে বাংলাদেশের এই চলচ্চিত্র অভিনেতা এর আগে ফেসবুক পাতায় একটি ভিডিও আপলোড করেছিলেন, যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হয়। অনেক শোবিজ তারকাও অনন্ত জলিলের এই ভিডিও নিয়ে কথা বলেছেন। প্রথম ভিডিওটির শুরুতে মি. জলিল ধর্ষকদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু কথা বলেছেন, তবে ভিডিওর পরবর্তী অংশে তার বেশ কিছু কথার মাধ্যমে ধর্ষণের শিকার ব্যক্তিদেরই দোষারোপ বা 'ভিকটিম ব্লেমিং' করা হয়েছে বলে অনেকেই অভিযোগ করেছেন। কিন্তু নতুন আপলোড করা ভিডিওতে নিজের বক্তব্য পরিবর্তন করেন অনন্ত জলিল। ভিডিওটির ক্যাপশন হলো, "ধর্ষণের জন্য নারীদের পোশাক না, পুরুষদের বিকৃত মানসিকতাই দায়ী।" তিনি বলেন, "আমি ২০০৮ থেকে মিডিয়াতে। এখন ২০২০। অনন্ত জলিলের ক্যারেকটার সবার জানা। মেয়েদেরকে আমি সম্মান করি, মেয়েরা মায়ের জাতি।" বাংলাদেশে ধর্ষণ বিরোধী চলমান আন্দোলনের মধ্যে অনন্ত জলিল সব মিলিয়ে তিনটি ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করেন। এর মধ্যে প্রথম ভিডিওটিতে তিনি নারীদের পোশাক নিয়ে বক্তব্য দেয়ার পর পরের দু'টিতে তিনি নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেন। প্রথম ভিডিওতে নারীরা কী করলে ধর্ষণের শিকার হবে না, সে বিষয়ে কিছু মতামত দিচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন মি. জলিল। কিন্তু এ নিয়ে তুমুল সমালোচনা শুরু হলে তিনি ড্রেসের ব্যাপারটা বাদ দিয়ে এবং আগের ভিডিও'র বিষয়ে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে ফেসবুক ও ইউটিউবে আরেকটি ভিডিও আপলোড করেন। এরপর সর্বশেষ প্রকাশ করা ভিডিও-তে তিনি বলেন, একটি ব্যাপারে তিনি মর্মাহত। অনন্ত জলিল বলেন, ভিডিওটিতে ৩ মিনিট ৪৯ সেকেন্ড ধর্ষকদের বিরুদ্ধে বলেছি, যারা পোশাক নিয়ে সমালোচনা করেছেন তাদের চোখে পড়েনি। "আমি যে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর কথা বললাম, সেগুলো নিয়ে অ্যাপ্রিশিয়েট করতে পারতেন।" তিনি আরও বলেন, "নেগেটিভটাই আপনাদের কাছে বড়।" এরপরের অংশে তিনি আগের ভিডিওটির কিছু অংশ জুড়ে দেন। শনিবার রাতে অনন্ত জলিলের ফেসবুক পাতায় ধর্ষণ ইস্যুতে প্রথম ভিডিওটি আপলোড করা হয়। রোববার সারাদিনই ওই ভিডিও নিয়ে ফেসবুকে বেশ আলোচনা-সমালোচনা দেখা গেছে। অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন তার ফেসবুকে লেখেন, "আমি মেহের আফরোজ শাওন, বাংলাদেশের একজন চলচ্চিত্র ও মিডিয়াকর্মী এবং স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সচেতন নাগরিক হিসাবে বাংলাদেশের নারীদের প্রতি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং অসংলগ্ন বক্তব্য সম্বলিত ভিডিও বার্তা দেয়ার জন্য জনাব অনন্ত জলিলকে বয়কট করলাম।" আরো পড়ুন: ধর্ষণ প্রতিরোধে 'ক্রসফায়ার' নিয়ে এত আলোচনা কেন? ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড, আইন সংশোধনের সিদ্ধান্ত ভারতে নির্ভয়া-কাণ্ডের স্মৃতি ফেরাল হাথরাসের ধর্ষিতা তরুণী প্রথম ভিডিওতে যা বলেন অনন্ত জলিল "আমি আজ কিছু কঠিন কথা বলবো," এই বলে তার বক্তব্য শুরু করেছিলেন অনন্ত জলিল। ধর্ষণের মতো অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরোধিতা করে মূলত তিনি ভিডিও বার্তায় বক্তব্য রাখেন। তবে ভিডিওর এক পর্যায়ে তিনি বলেন, "আমাদের দেশের সমস্ত মেয়েদের উদ্দেশ্যে কিছু বলি ভাই হিসেবে। সিনেমা, টেলিভিশন সোশাল মিডিয়াতে অন্য দেশের অশ্লীল ড্রেসআপ দেখে ফলো করার চেষ্টা করো। এবং ফলো করে সেইম ড্রেসআপ পরে ঘোরাঘুরি করো। এরপর তিনি বলেন, "এই চেহারার দিকে মানুষ না তাকিয়ে তোমাদের ফিগারের দিকে তাকায়"। "ফিগারের দিকে তাকিয়ে বখাটে ছেলেরা বিভিন্নভাবে মন্তব্য করে এবং রেপ করার চিন্তা তাদের মাথায় আসে ... তোমরা কি নিজেদের মডার্ন মনে করো? এটা কি মডার্ন ড্রেস নাকি অশালীন ড্রেস?" তিনি মেয়েদের 'শালীন পোশাক' পরার ওপর জোর দেন। অনন্ত জলিল বলেন, "নিজেকে একটা ভদ্র মেয়ের পাশে দাঁড় করিয়ে দেখো, কত বাজে লাগ��।" "ছেলেদের মতো একটা টি-শার্ট পরে রাস্তায় বের হয়ে যাও। খুব মডার্ন তুমি! নিজেকে অনেক মডার্ন মনে করো! তারপর ইজ্জত হারিয়ে বাসায় যাও। হয় আত্মহত্যা করো, নয়তো কাউকে আর মুখ দেখাতে পারো না।" "শালীন ড্রেস পরলে যারা বখাটে, যারা ধর্ষণের চিন্তা-ভাবনা করে তারাও তোমার দিকে তাকাবে না। সম্মান করবে। মাটির দিকে তাকিয়ে চলে যাবে," বলেন তিনি। ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান চালু করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধও জানান অনন্ত জলিল। "আমি মেয়েদেরকে সম্মান করি, শুধু মেয়েদের না সারা দেশের মানুষকে সম্মান করি," এই বলে নতুন প্রকাশ করা ভিডিও-তে বক্তব্য শুরু করেন অনন্ত জলিল। +text: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ সমাবেশ। নির্যাতিত ছাত্রীটি এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসাধীন। বিবিসিকে তিনি বলেন, রবিবার সন্ধ্যায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে চড়ে বান্ধবীর বাসায় যাচ্ছিলেন। উদ্দেশ্য একসাথে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি কুর্মিটোলা এলাকায় বাস থেকে নামেন। ভিক্টিম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি আছেন। আরও পড়তে পারেন: ভালোবেসে বিয়ে, পরকীয়া-নির্যাতন সত্ত্বেও মানিয়ে চলা পুরুষ নির্যাতন: কতটা ? সমাজ কি এড়িয়ে যাচ্ছে ? আদালতে আড়াই মাসের শিশু, আইন বদলানোর আদেশ সেখান থেকেই অজ্ঞাত এক ব্যক্তি তার মুখ চেপে ধরে পাশের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। ঘটনার আকস্মিকতায় সেখানেই জ্ঞান হারান ছাত্রীটি। নির্যাতনের এক পর্যায়ে জ্ঞান ফিরে পান তিনি এবং আবার জ্ঞান হারান। রাত ১০টার দিকে জ্ঞান ফেরে তার এবং তিনি তার বান্ধবীর সাথে যোগাযোগ করে হাসপাতালে পৌঁছান। এ ঘটনায় একটি মামলায় দায়েরের প্রস্ততি চলছে। ঢাকার এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ব্যস্ত রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। +text: ২০২০ সালে ইমোতে নয় হাজার কোটির বেশি মেসেজ পাঠিয়েছেন বাংলাদেশিরা। বছরজুড়ে বাংলাদেশি ইমো ব্যবহারকারীরা সাড়ে নয় হাজার কোটির বেশি মেসেজ এবং আড়াই হাজার কোটির বেশি অডিও-ভিডিও কল করেছে। এর মধ্যে তিন হাজার কোটির মত রয়েছে আন্তর্জাতিক মেসেজ আর দেড় হাজার কোটির বেশি আন্তর্জাতিক অডিও-ভিডিও কল রয়েছে। মেসেজিং অ্যাপ কোম্পানিটি এক বিবৃতিতে বলছে, "বাংলাদেশিদের ইমোর ব্যবহার রেকর্ড ছুঁয়েছে।" কোম্পানিটি বিবিসিকে জানিয়েছে বিশ্বে বাংলাদেশেই ইমোর সবচেয়ে বেশি ব্যবহারকারী। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে তিন কোটি সত্তর লাখ বার এটি ইন্সটল করা হয়েছে। গণমাধ্যমকে পাঠানো বিবৃতিতে ইমো'র ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশিদের এই প্রবণতাকে 'অভূতপূর্ব' বলে উল্লেখ করেছেন। কারা, কোথায় পাঠাচ্ছেন এত বার্তা ইমো অনেক বেশি জনপ্রিয় বিভিন্ন দেশে কর্মরত বাংলাদেশের অভিবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে। যে কোন অভিবাসী কর্মী ও তাদের আত্মীয় স্বজনদের সাথে কথা বললেই জানা যাবে তাদের মোবাইল ফোনে ইমো ইন্সটল করা আছে। যেমনটা বলছিলেন একটি ডেলিভারি সার্ভিসের কর্মী আব্দুল কাইয়ুম। বাংলাদেশের অভিবাসী কর্মীদের কাছে ইমো খুব জনপ্রিয়। তিনি বলছেন, "আমার নিজের ভাই মালয়েশিয়া থাকে। ফুপাত ভাই, খালুসহ আরও আত্মীয় বিদেশে থাকে। ওনাদের সাথে ইমোতেই কথা বলতে হয়। কারণ ওনারা সবসময় ইমোতেই কল দেয়। আমি অফিসের কাজে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করি কিন্তু দেখা যাইতেছে অন্যদের কাছে হোয়াটসঅ্যাপ বা ভাইবার এইসব নাই।" মিরপুরের রাবেয়া খাতুনের স্বামী থাকেন সৌদি আরব। তিনি বলছেন, "ইমো না থাকলে জিজ্ঞেস করে- নাই কেন? তাই আমাদেরও ইমো নামাইতে হইছে। ইমোতে সব নম্বর খুইজা পাই। কিন্তু অন্যগুলা নামাইয়া দেখছি। অনেক নম্বর খুইজা পাওয়া যায় না।" রাবেয়া খাতুনের স্বামী যে দেশে থাকেন সেই সৌদি আরবেই সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক মেসেজ ও কল আদান প্রদান হয়েছে বলছে ইমোর বার্ষিক রিপোর্ট বলছে। বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংখ্যকই কাজ করছেন এই দেশটিতে। আরো পড়ুন: 'ইসরায়েলি' প্রযুক্তি দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে নজরদারি বয়স বেশি দেখিয়ে কিশোরীদের যেভাবে সৌদি আরবে পাঠানো হচ্ছে চ্যাটিং অ্যাপে 'গোপনীয়তার নিশ্চয়তা প্রায় অসম্ভব' যে পাঁচটি দেশের সাথে সবচেয়ে বেশি বার্তা আদান প্রদান হয় তার মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ওমান। তারপর মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতার। সবগুলো দেশই বাংলাদেশে অভিবাসী কর্মীদের পছন্দের গন্তব্য। বাংলাদেশিদের মধ্যে অনলাইন ব্যবহারের প্রবণতা ২০২০ সালে অনেক বেড়েছে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে যেহেত�� সরাসরি যোগাযোগ অনেকটা কমে গিয়েছিল। যে কারণে বাংলাদেশিদের মধ্যে ইমো এত জনপ্রিয় গ্রামীণফোনের চিফ ডিজিটাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি অফিসার সোলায়মান আলম মূল দুটি কারণ উল্লেখ করেছেন। তিনি বলছেন, "ইমোর ব্যাবহারের জনপ্রিয়তার শুরু মধ্যপ্রাচ্যে। এর একটি বড় কারণ হল মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বিশ্বের অন্যান্য জনপ্রিয় যেসব মেসেজিং অ্যাপ রয়েছে সেগুলোর ব্যাবহার নিষিদ্ধ। বাংলাদেশের অভিবাসীদের তাই ইমো ব্যবহার করতে হচ্ছে। আর বাংলাদেশেও তাই তাদের আত্মীয়দের ইমো ইন্সটল করতে হচ্ছে।" মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বিশ্বের জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ বেশিরভাগই নিষিদ্ধ। তার ভাষায় অন্য আর একটি কারণ হল ইমোতে ইন্টারনেট ব্যাবহার সাশ্রয়ী। "ইমোতে মেসেজ কমপ্রেসড হয়ে যায়। অর্থাৎ এতে ফাইল সাইজ ছোট হয়ে আসে। অন্য মেসেজিং অ্যাপের তুলনায় ইন্টারনেট ডাটা কম ব্যবহার হয়। তাই মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের যে ভাইয়েরা রয়েছেন তাদের জন্য অন্য অ্যাপ ব্যাবহারের চাইতে ইমোর ব্যবহার সাশ্রয়ী। তবে এর একটি অসুবিধা হল এর ফলে ভিডিও বা অডিওর মান খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু সবারতো প্রফেশনাল কোয়ালিটির অডিও-ভিডিও দরকার নেই।" আর ইমোর বিভিন্ন ভার্শন রয়েছে তাই সেটি প্রায় সব ধরনের হ্যান্ডসেটে ইন্সটল করা যায়। ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা ও তথ্য নিরাপত্তা বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৫০টিরও বেশি দেশে ৬২ ভাষায় ২০ কোটিরও বেশি মানুষ ইমো ব্যবহার করলেও এই অ্যাপ নিয়ে অবশ্য অনেকের অভিযোগও রয়েছে। অ্যাপটি ইন্সটল করা মাত্রই একের পর এক বিরতিহীন নোটিফিকেশন আসতে থাকে। অপরিচিত লোকজনের কাছ থেকে মেসেজ আসে, তারা এখন ইমোতে আছেন, কেউ ইমো ব্যাবহার শুরু করেছেন সেসব তথ্য ছবিসহ দেখা যায়। আপনি চেনেন না, আপনার ফোনে যার নম্বর নেই তাদের কাছ থেকেও মেসেজ আসে। এর অর্থ হল অন্যদের কাছেও আপনার মেসেজ চলে যাচ্ছে সেটি হয়ত আপনি জানেনও না। ইমোতে আপনার তালিকায় থাকা বন্ধুদের যারা বন্ধু তাদের পোস্টও দেখা যায়। এর কারণ হল আপনার কন্টাক্টে যারা আছেন আর তাদের সাথে যাদের ইমোতে যোগাযোগ, তাদের মধ্যে এক ধরনের যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। এসব কারণে অনেকেই ইমোতে নিরাপদ বোধ করেন না। সোলায়মান আলম বলছেন, "এগুলো খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। অন্যসব অ্যাপের মতো ইমোর সেটিংস-এ গিয়ে মাত্র দশ পনের মিনিট সময় ব্যয় করলেই আপন��� নিজেকে নিরাপদ করতে পারেন। এসব নোটিফিকেশন বন্ধ করতে পারেন, প্রাইভেসি বাড়িয়ে নিতে পারেন। ''এটা হয়ত অনেকেই করেন না, জানেন না অথবা প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন না। বিষয়টি ব্যবহারকারীর উপর নির্ভর করে," বলেন সোলায়মান আলম। মেসেজিং অ্যাপ ইমো তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০১৯ সালের তুলনায় গত বছর তাদের অ্যাপ ব্যাবহার করে বাংলাদেশিদের পাঠানো মেসেজের সংখ্যা বেড়েছে ৮ শতাংশের বেশি। +text: আসামের মোরিগাঁও জেলায় প্লাবিত একটি গ্রাম। এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষ এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। আর এই পানি ভাটিতে নেমে আসার পর বাংলাদেশের উত্তর এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে প্রবল বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভারতের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে আসামের সংবাদমাধ্যম বলছে, এপর্যন্ত বন্যায় মোট ৩০ ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছে। গত চার দিনে ধরে ভারী বর্ষণের ফলে আসামের ১৫টি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এই জেলাগুলোর ১১০০ গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয় আশ্রয় শিবিরে জায়গা নিয়েছেন প্রায় ১৮০০০ মানুষ। বন্যার জলে মহাসড়কের একাংশ ডুবে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে। আসামের বিভিন্ন জায়গায় জলের তোড়ে বাঁধ ভেসে গিয়েছে, সড়ক এবং সেতুও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ব্রহ্মপুত্র-বরাক নদীর উপত্যকায় প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে ব্যাপক বন্যা দেখা দিয়েছে। +text: পুজা শেঠ, তার ডিজে কনসোলের সামনে। ফটোগ্রাফার শায়ন হাজরার সাথে দেখা হয়েছিল ব্যাঙ্গালোরের ডিজে পুজা শেঠ-এর। "আমি চাই মানুষ আমার বাজানো গানগুলো উপভোগ করবে। আমার কাছে এগুলো মুক্তির গান," বলছেন তিনি, "এগুলোর মাধ্যমে আমি বাইরের দুনিয়ার কাছে নিজেকে তুলে ধরতে চাই।" পুজা শেঠ তার ডিজে কেরিয়ার শুরু করেন ২০১৪ সালে। ব্যাঙ্গালোরের পানশালাগুলো গানবাজনার জন্য বিখ্যাত। পার্টিতে ডিজে'র কাজে ব্যস্ত পুজা শেঠ। "আমি যখন ক্লাবগুলোতে বাজাতে শুরু করলাম তখন ভারতের বিভিন্ন শহর, এমনকি বিশ্বের নানা দেশে থেকে আসা মহিলা ডিজে-দের সাথে আমার দেখা হতো। কিন্তু সে সময় ব্যাঙ্গালোরে একজন সারী ডিজে ছিল না।" এর পরের দিনগুলোতে তিনি যখন বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে গান বাজানো শুরু করেন তখন লোকে 'ব্যাঙ্গালোরের একমাত্র নারী ডিজে' নামে তার পরিচয় দিতে শুরু করে। পুজা শেঠের রয়েছে অগনিত ভক্ত। আরো পড়তে পারেন: ধর্ষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো শেখাচ্ছেন যে নারী সন্তানপ্রসবের ৩০ মিনিট পরেই পরীক্ষা দিলেন এই নারী ভারতের দ্রুততম নারীর স্পষ্ট ঘোষণা- তিনি সমকামী 'সুন্দর' হতে গিয়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলা নারীরা কিন্তু ডিজে হিসেবে কেরিয়ার গড়ে তোলা তার জন্য খুব সহজ ছিল না, বলছেন পুজা শেঠ। পূর্ব ভারতের এক গ্রাম তার জন্ম। পরিবার বেশ রক্ষণশীল। কিন্তু তিনি ঘরের মধ্যে বন্দি না থেকে নিজের কেরিয়ার গড়ে তুলতে চেয়েছেন। "আমার বাবা-মা সবসময় চেয়েছি আমি বিয়েথা করে সংসারী হই। কিন্তু আমি তা চাইতাম না।" পুজা শেঠ-এর অ্যালবামে পরিবারের স্মৃতি। নিজের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য স্কুলের পড়া শেষ হওয়ার পর তিনি ঘরে ছেড়ে পারিয়ে যান। "আমার যে সমাজ সেখানে মেয়েদের কাজ করতে দেয়া হয় না। অনেক মেয়ে স্বামীর ঘরে যাওয়ার আগে বাড়ি থেকে বেরই হয় না। এজন্যেই আমাকে ঘর ছাড়তে হয়।" ডিজে'র কাজের পাশাপাশি রয়েছে ঘরকন্নার দায়িত্ব। বিবিসি বাংলায় আরও খবর: নুসরাত হত্যা: আটক হলো ফেরারি ওসি মোয়াজ্জেম ঢাকার বাসিন্দাদের যেসব তথ্য পুলিশকে জানাতে হবে কাজের সন্ধানে পুজা শেঠ হাজির হন ব্যাঙ্গালোরে। সেখানে তিনি কিছুদিন এয়ার স্টুয়ার্ডেস হিসেবে কাজ করেন। সেখানেই তিনি প্রথমবারের মতো কোন পার্টিতে যোগ দেন। "পার্টিতে গিয়ে প্রথম যার দিকে আমার নজর পড়লো সে হলো ডিজে। আমার মনে আছে আমি খুবই চমৎকৃত হয়েছিলাম।" তখনই তিনি বুঝতে পারেন তিনি আসলে কী করতে চান। নিজের কাজ নিয়ে তৃপ্ত পুজা শেঠ। "এরপর ব্যাঙ্গালোরের ক'জন ডিজে'র সাথে আমার পরিচয় হয়। তারা আমাদের ডিজে'র কাজের প্রাথমিক দিকগুলো সম্পর্কে ধারণা দেন। বাকি কাজ আমি ইউটিউব ভিডিও দেখে শিখে ফেলি।" এরপর গত পাঁচ বছরে মিস শেঠ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাড়ে চারশোর বেশি অনুষ্ঠানে গান বাজিয়েছেন। যথেষ্ট গ্ল্যামার থাকলেও ভারতে ডিজেৰর কাজে বেশ ঝুঁকিও রয়েছে, বলছেন তিনি। "মানুষ সব সময় আমাকে বলে এটা মেয়েদের কাজ না।" ডিজে'র কাজ যথেষ্ট গ্ল্যামারাস। কিন্তু পরিশ্রম আর ঝুঁকিও রয়েছে অনেক। "ক্লাবগুলিতে প্রায়ই মাতাল লোকেরা এসে আমার সাথে কথা বলতে চায়। অনেকে আমার কাছ থেকে ফোন নাম্বারও চায়। কিন্তু আমি তাদের উপেক্ষা করি। বেশি ঝামেলা করলে বাউন্সাররা এসে সেটা সামাল দেয়।" কিন্তু এসব সমস���যার পরও তিনি দমে যান না। "আমার কাজের সবচেয়ে ভাল দিক হলো মানুষজন আমার বাজনার সাথে নাচতে পছন্দ করে। তারা আমার সঙ্গীতের সাথে যুক্ত হয়। এই ভাল লাগার জন্যই লোকে আমার অনুষ্ঠানে আসে।" ছবি: শায়ন হাজরা ভারতের নাইটক্লাবগুলোতে নারী ডিজে'র দেখা পাওয়া বেশ বিরল ঘটনা। +text: পাকিস্তানের নির্বাচনের প্রধান তিন প্রতিদ্বন্দ্বী নওয়াজ শরীফ,ইমরান খান আর বিলাওয়াল ভুট্টো। প্রায় ২০ কোটি মানুষের এই দক্ষিণ এশিয়ার দেশে কী হচ্ছে তা গুরুত্বপূর্ণ: ভারতের এই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ পারমাণবিক শক্তি সম্পন্ন, এটি বিশ্বের অন্যতম প্রধান উন্নয়নশীল অর্থনীতির একটি আর বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম প্রধান দেশগুলোর একটি। পাকিস্তানের এবারের নির্বাচনকে বলা হচ্ছে সেদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে দূষিত নির্বাচন। কেন গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচন? ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে সামরিক ও বেসামরিক শাসনের মধ্যে দোদুল্যমান ছিল পাকিস্তান। কোনো একটি বেসামরিক সরকার আরেকটি বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার ঘটনা এবার দ্বিতীয়বারের মত ঘটবে পাকিস্তানে। তবে পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক সরকারের এই ধারাবাহিকতা উদযাপন করার সুযোগ পাচ্ছেন না খুব বেশী মানুষ। এবারের নির্বাচনের আগে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নাওয়াজ (পিএমএল-এন) ও দেশটির সেনাবাহিনীর মধ্যে চলা অস্থিরতাই ছিল দেশটিতে প্রধান আলোচনার বিষয়। পিএমএল-এন'এর অভিযোগ, আদালতের সহায়তা নিয়ে দেশটির শক্তিশালী নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে। অনির্দিষ্ট নির্বাচনী আইন ভঙ্গের দায়ে সারাদেশে দলটির প্রায় ১৭ হাজার সদস্যের বিরুদ্ধে আইনি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে দেশটির গণমাধ্যমকেও ব্যাপক ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে এবং তাদের স্বাধীনতায় বাধা দেয়া হয়েছে। নির্বাচনে জঙ্গী সংস্থার সদস্যদের অংশগ্রহণও পাকিস্তানিদের একটি বড় চিন্তার বিষয়। অনেকেই মনে করেন দেশের পুরোনো ধারামাফিক নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর সুবিধার্থে নির্বাচনী কৌশল সাজানোর চেষ্টা করছে সেনাবাহিনী। পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন বলেছে, নির্বাচনের ফল প্রভাবিত করার জন্য "আক্রমণাত্মক ও নির্লজ্জ" প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে যা পাকিস্তানের একটি "কার্যকর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে" পরিণত হওয়ার জন্য আশঙ্কাজনক পরিস্থিত��� তৈরী করতে পারে। নির্বাচনী প্রচারণায় এরমধ্যে সহিংস আক্রমণের ঘটনাও ঘটেছে। ১৩ই জুলাই বেলুচিস্তানে এক হামলায় প্রায় ১৫০ জন মানুষ মারা যায়, যার দায় স্বীকার করেছে আইএস। ১৯৪৭ থেকে সামরিক ও বেসামরিক নেতৃত্বের পালাবদল হয়েছে পাকিস্তানে নির্বাচনে কারা প্রধান প্রার্থী? নাওয়াজ শরীফ (পিএমএল-এন), ৬৮ তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের বিরুদ্ধে পানামা পেপার্স তদন্তে দূর্নীতির অভিযোগ উঠলে পাকিস্তানের আদালত তাঁকে সরকারি দায়িত্বে থাকার অযোগ্য ঘোষণা করে। এরপর তিনি লন্ডনে চিকিৎসারত স্ত্রী'র সাথে দেখা করতে যান। তাঁকে ১০ বছরের কারাদন্ড দেয়া হলেও জুলাইয়ের শুরুতে কন্যা মরিয়মকে নিয়ে তিনি দেশে ফেরত আসেন এবং গ্রেফতার হন। খোলামেলাভাবে সেনাবাহিনীর সমালোচনা করায় ও ভারতের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টার কারণে সেনাবাহিনী তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তবে কোনো ধরণের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছে সেনাবাহিনী। নওয়াজ শরীফের ছোট ভাই শেহবাজ শরীফ পিএমএল-এন'এর প্রচারণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ইমরান খান (পিটিআই), ৬৫ সাবেক এই তারকা ক্রিকেটার দুই দশক আগে পাকিস্তানের রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়েছেন কিন্তু কখনো সরকার পরিচালনা করেননি। অনেক পর্যবেক্ষকের মতে, এবার সেনাবাহিনীর পছন্দের প্রার্থী তিনি আর তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করছে তারা। সেনাবাহিনী ও মি. খান এধরণের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মি.খান বলেন পাকিস্তানের বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল বাজওয়া "সম্ভবত সবচেয়ে বেশী গণতান্ত্রিক মনোভাবসম্পন্ন সেনাপ্রধান।" পিটিআই বিতর্কিত কয়েকটি দলের সমর্থনপুষ্ট, যাদের একটি দলে আল-কায়েদার সাথে বন্ধুভাবাপন্ন। বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি (পিপিপি), ২৯ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা নেয়া বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসসম্পন্ন পরিবারের সন্তান। তার মা বেনজির ভুট্টো ও পিতামহ জুলফিকার আলী ভুট্টো দু'জনই পাকিস্তানরের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁদের দু'জনকেই হত্যা করা হয়েছে; মিজ. ভুট্টো আততায়ীর হাতে নিহত হন আর তাঁর পিতার মৃত্যু হয় জল্লাদের হাতে। প্রথমবারের মত সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া ২৯ বছর বয়সী বি��াওয়াল ভুট্টো বলেছেন তিনি তাঁর মা'য়ের স্বপ্নের "শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল, উন্নয়নশীল ও গণতান্ত্রিক পাকিস্তান" প্রতিষ্ঠা করতে চান। নির্বাচন পূর্ববর্তী জরিপ অনুযায়ী তাঁর দল তৃতীয় স্থান পাবে নির্বাচনে। পাকিস্তানের নির্বাচনী প্রদেশসমূহ কোথায় হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা? নওয়াজ শরীফের জন্মস্থান ও পাকিস্তানের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ পাঞ্জাব প্রদেশ পিএমএল-এন'এর শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। জাতীয় সংসদে সরাসরি নির্বাচন হওয়া ২৭২টি আসনের অর্ধেকের বেশী আসনই এই প্রদেশে অবস্থিত। পাঞ্জাবেই প্রধান নির্বাচনী লড়াই হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই প্রদেশে জিততে হলে ইমরান খানের পিটিআই'কে কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে। ২০১৩ সালের নির্বাচনে খাইবার পাখতুনওয়ালায় সফলতা পেয়েছিল পিটিআই। বিশ্লেষকদের মতে মি. ভুট্টো'র পিপিপি "গ্রাম্য জনগোষ্ঠীর" মধ্যে জনপ্রিয় আর দক্ষিণের সিন্ধ প্রদেশে মূলত তাদের সমর্থকদের অবস্থান। কী হতে পারে ফলাফল? প্রধান তিন দলের দুই দলই নির্বাচনের ন্যায্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন নাওয়াজ শরীফের পিএমএল-এন আর ইমরান খানের পিটিআই'য়ের মধ্যে জোর লড়াই হবে। কোনো দলই যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায় তাহলে মি. ভুট্টোর পিপিপি ও অন্যান্য দলের সমর্থন জোট সরকার গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। সেনাবাহিনীর সাথে ইমরান খানের ঘনিষ্ঠতা ও ইসলামপন্থী জঙ্গীদের বিরুদ্ধে অপেক্ষাকৃত নরম অনুভূতিসম্পন্ন হওয়ার ধারণার কারণে, পিএমএল-এন নির্বাচনে জিতলে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র কিছুটা স্বস্তি পেতে পারে। পিটিআই জিতলে পিএমএল-এন শক্ত আন্দোলনে নামতে পারে, বিশেষত যদি নাওয়াজ শরীফের কারাদন্ড অব্যাহত থাকে। তবে নির্বাচনে যারাই জয় পাক, পাকিস্তানের রাজনৈতিক পটভূমিতে নিজেদের দাপট ধরে রাখার চেষ্টা করবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। আরো পড়ুন: পাকিস্তানে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীরা মেয়াদ শেষ করতে পারে না কেন? ইমরান খান কি জয়ের গন্ধ পাচ্ছেন? বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে আস্থার সংকট কি বাড়ছে? নির্বাচনী প্রচারণায় সহিংসতার ঘটনা আর নানা ধরণের রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরী হলেও বুধবারের সাধারণ নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন কোটি কোটি পাকিস্তানি। +text: কেন শেষ হচ্ছে না সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত? তারা বলছেন কোন একটি পক্ষ ��াধা সৃষ্টি করায় মামলার তদন্তে অগ্রগতি হচ্ছে না। অবশ্য এই বিষয়ে এমনকি এই মামলা নিয়েই এখন আর কোন কথা বলতে রাজি নয় তদন্তকারি সংস্থা র‍্যাব। ইদানিং ক্রিকেটের প্রতি বেশ ঝোঁক মেঘের। রাজধানীর ইন্দিরা রোডসংলগ্ন টিএন্ডটি মাঠে এক সকালে গিয়ে দেখা যায়, ব্যাট-প্যাড নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলায় ব্যস্ত মেঘ। বাবা সাগর সারওয়ার আর মা মেহেরুন রুনির অভাববোধ হয়তো সবসময়ই থাকবে, তবে এর মধ্যেই জীবনের নিয়মে নানা ব্যস্ততায় নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছে সাগর-রুনি দম্পতির বেঁচে যাওয়া এই একমাত্র সন্তান। এই মাঠেই কথা হয় মেঘের মামা নওশের রোমানের সঙ্গে। মামলার প্রসঙ্গ উঠতেই হতাশা ঝরে পড়লো সাগর-রুনি হত্যা মামলার এই বাদীর কণ্ঠে। "আমরা আসলে গত দুই বছর ধরে মামলা নিয়ে কিছুই জানতে পারিনি। তারা এ মামলা নিয়ে কোন কথা বলছে না। আগে মিডিয়ার মাধ্যমে কিছুটা হলেও জানতে পারতাম। এখন সেখানেও তারা কথা বলছে না। এসব দেখে মনে হয় যে তারা এখন আর এ মামলার কোন তদন্তই করছে না।" ২০১২ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি। হত্যাকাণ্ডের পরপরই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনীদের গ্রেফতারের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর পুলিশ প্রধান জানিয়েছিলেন, তদন্তে প্রণিধানযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু এরপরই হঠাৎ থমকে যায় তদন্তের অগ্রগতি। রহস্যের জট তো খোলেইনি বরং আরো ঘণিভূত হয়। হত্যার কারণ নিয়ে ছড়িয়ে পড়ে নানারকম গুজব আর ষড়যন্ত্র তত্ত্ব। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে অনুসন্ধান করেছিলেন সাংবাদিক হারুন উর রশীদ। তার মতে, তদন্ত সঠিক পথে না থাকাতেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে নানারকম গুজব ছড়ানো হয়েছিলো। "প্রভাবশালীরা কেউ জড়িত, অথবা সাগর কোন একটা বই লিখেছে অথবা কোন ব্যক্তিগত সম্পর্কের জায়গা থেকেও এটি ঘটতে পারে এরকম নানা কথা বাজারে ছড়িয়েছিলো। এমনকি পুলিশ গ্রিল কাটা চোর নিয়ে মহড়া করে সেটা ভিডিও করেছিলো। মানে চোর তত্ত্বও তো বাজারে এসেছে। এরকম নানা তত্ত্ব যখন বাজারে ছড়ায় তখন বোঝা যায় যে, ঘটনার আসল তদন্ত হচ্ছে না। এসব গুজব অনেক সময় আইন-শৃংখলা রক্ষাবাহিনীর পক্ষ থেকেও ছড়ানো হয় উদ্দেশ্যমূলকভাবে।" সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডে মামলা হওয়ার পর প্রথমে এর তদন্তে নামে শেরে বাংলা থানা পুলিশ। চারদিনের ম��থায় মামলা হাতবদল হয় ডিবি পুলিশের কাছে। এর ৬২ দিনের মাথায় ডিবি আদালতে ব্যর্থতা স্বীকার করলে তদন্তের দায়িত্ব পায় র‍্যাব। দায়িত্ব নিয়েই সাগর ও রুনির মরদেহ কবর থেকে তুলে এনে পুনরায় ময়না তদন্ত ও ভিসেরা পরীক্ষা করে র‍্যাব। বেশ কয়েকজন গ্রেফতার হলেও তদন্ত আর এগোয়নি। এখনকার বাস্তবতা হচ্ছে, র‍্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য এখন পর্যন্ত ৫৩ বার সময় নিয়েছেন। আগামী পহেলা ফেব্রুয়ারি এই প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ, কিন্তু খোঁজখবর নিয়ে যতদূর বোঝা যাচ্ছে, এবারও হয়ত তারা সেই প্রতিবেদন জমা দিতে পারবেন না। কেন এই বিলম্ব, এ নিয়ে বক্তব্য জানতে পুলিশ, র‍্যাব, র‍্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে বিবিসির তরফ থেকে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তারা কথা বলতে রাজী হননি। মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন, যিনি শুরু থেকেই এই মামলার কার্যক্রমের উপর নজর রাখছিলেন, বিবিসিকে বলেন, "কয়েকটি কারণে তদন্ত থেমে যেতে পারে। প্রথমত: এ ঘটনায় এমন প্রভাবশালী কেউ জড়িত, যার কেশাগ্র স্পর্শ করার ক্ষমতা কারো নেই। দ্বিতীয়ত: এ ঘটনায় এমন একটা পাবিলক পারসেপশন তৈরি হয়েছে যে, এর বিপরীত কোন তথ্য তদন্তে বের হলেও তা প্রকাশ করতে পারছেন না তদন্তকারীরা। কোন মামলায় যখন নানারকম চাপ কিংবা বাধা তৈরি হয়, তখন অনেক সময় তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত শেষ না করে সময়ক্ষেপনের কৌশল নিয়ে থাকেন। এখন বাধাটা কোথায় সেটা সুস্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে না।" সাগর-রুনি হত্যার বিচার চেয়ে ঘটনার পরপরই আন্দোলনে নেমেছিলেন অনেকেই। অল্পকিছুদিন পরই সেই আন্দোলন থেমে গেলেও আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী পরে হয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা। তবে তিনি কোন বাধার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলছেন, তদন্তে সরকারের পক্ষ থেকে কখনোই কোন বাধা দেয়া হয়নি। হত্যাকাণ্ডের একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী ৫ বছরের মেঘ এখন ১১ বছরে। তার দু:সহ স্মৃতি ভোলার একটা উপলক্ষ হয়তো হতে পারতো খুনীদের বিচার। কিন্তু অবস্থা এখন এমন দাড়িয়েছে যে, এই হত্যার বিচার নিয়ে আশাই ছেড়ে দিয়েছেন খোদ সাগর-রুনির পরিবার। আরো পড়ুন: সাগর-রুনি হত্যার পাঁচ বছর: এখনো কেউ কিছু জানেনা কেমন ছিল মোহনদাস গান্ধীর জীবনের শেষ দিনগুলো ভারতে দুই কোটি�� বেশি 'অবাঞ্ছিত কন্যা' শিশুর জন্ম 'আমার স্ত্রী এখন আর গোসলই করেনা' তদন্ত সঠিক পথে নেই বলে দীর্ঘ প্রায় ৬ বছরেও চাঞ্চল্যকর সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত শেষ হচ্ছে না। এমনটাই মনে করছেন মেহেরুন রুনির পরিবার, সহকর্মী সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা। +text: স্কুলটিতে এর আগেও এমন ঘটনাা ঘটলেও, এই ছবিটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার মুখে বিষয়টি মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে। আব্দুল কাদের গাজী নামে স্থানীয় একজন ব্যক্তি 'একজন অভিভাবক হিসেবে' এই মামলা করেছেন বলে জানিয়েছেন হাইমচর থানার ওসি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। পুলিশের এই কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, মামলায় মিস্টার গাজী অভিযোগ করেছেন, স্কুলে ছেলেদের ওপর নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছে এবং তাদের শরীরের ওপর দিয়ে হেটে গিয়ে তাদের নির্যাতন করা হয়েছে। তবে প্রতিবছর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীরা এরকম সেতু তৈরি করে থাকে এবং সেখানে এর আগেও অন্য একাধিক অতিথি হেঁটেছেন বলে বিবিসিকে জানান স্কুলটির প্রধান শিক্ষক মোশাররফ হোসেন । মামলায় অভিযুক্ত অপর চারজন হলেন, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, প্রধান শিক্ষক মোশাররফ হোসেন, ম্যানেজিং কমিটির অপর দুজন সদস্য। পুলিশ এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান ওসি মি. রহমান। হাইমচরের নীলকমল উছমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সময় শিক্ষার্থীদের শরীর দিয়ে তৈরি ওই মানব সেতুর ওপর দিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটোয়ারীর জুতা পায়ে হেটে যাওয়ার ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তা ব্যাপক সমালোচনার ঝড় তোলে। ছবিতে দেখা যায়,দুই সারিতে স্কুল শিক্ষার্থীরা দাঁড়িয়ে, এবং তাদের মেলে দেয়া হাতের ওপর একজন শিক্ষার্থী শুয়ে আছে। আর তার পিঠের ওপর দিয়ে জুতো পায়ে হেটে যাচ্ছেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি। অন্যপাশে একজন শিক্ষার্থী হাত আর হাঁটুর ওপর ভর দিয়ে উপুড় হয়ে রয়েছে, যাতে তিনি তার পিঠের ওপর পা দিয়ে নামতে পারেন। তবে এবারই এর ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার মুখে বিষয়টি মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে। আরও পড়তে পারেন: স্কুল শিক্ষার্থীদের শরীর সেতুর ওপর চেয়ারম্যান ইনি কি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সৎ ভাই? সাহানাই কি বিশ্বের প্রথম বৃক্ষমানবী? ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা: ইরানকে সতর্ক করলো যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার একটি স্কুলে শিক্ষার্থীদের শরীর দিয়ে তৈরি করা প্রতীকী পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে হেটে যাওয়ার ঘটনায় উপজেলার চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটোয়ারী সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। +text: রোজিনা ইসলামের জামিনের আবেদনের শুনানি হয়েছে আজ বৃহস্পতিবার তার আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বিবিসিকে বলেছেন, আগামী রোববার জামিনের বিষয়ে আদেশ হবে বলে তারা জানতে পেরেছেন। তিনি জানিয়েছেন, দুপুরের পর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতের বিচারক রোববার জামিনের আদেশের দিন নির্ধারণ করেছেন। সরকারি আইনজীবী বা পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু বিবিসিকে একই তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে বেলা সাড়ে বারটার দিকে আদালতে আজ ভার্চুয়াল শুনানি করা হয়। তাতে সরকার পক্ষ এবং রোজিনা ইসলামের পক্ষের আইনজীবীরা তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। সরকারের পক্ষে আইনজীবী জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেছেন। এর আগে মিজ ইসলামের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী জানান, আদালত সরকার পক্ষ এবং অভিযুক্তের পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদেশ পরে দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। শুনানির পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন তারা আজ বৃহস্পতিবার আদেশ পাবেন বলে আশা করছেন। ওদিকে রোজিনা ইসলাম কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন এবং ভার্চুয়াল শুনানি হওয়ায় তাকে আদালতে আনা হয়নি। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে আদালতে নেয়া হয়েছে খবর চেপে যাওয়া কী শুধু সরকারের চাপে নাকি মালিকদের স্বার্থেও? গণমাধ্যম কতটা স্বাধীন? সাংবাদিক ও পাঠকের চোখে রোজিনাকে গ্রেফতারের আইন নিয়ে সরকার ও সাংবাদিকদের ভিন্ন অবস্থান রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে শত বছরের পুরোনো আইনে মামলা দেয়ার ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে এর আগে গত মঙ্গলবার রোজিনা ইসলামকে রিমান্ডে নেয়ার জন্য পুলিশের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলো আদালত । গত সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তার কক্ষে পাঁচ ঘন্টার বেশি সময় রোজিনা ইসলামকে আটকে রাখার পর পুলিশের কাছে হস্তান্ত করা হয়েছিল। সোমবার রাতেই তার বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের আওতায় মামলা করা হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। সেই মামলায় তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় নথি চুরি এবং অনুমতি ছাড়া সেই নথির ছবি তোলার অভিযোগ আনা হয়েছে। তাকে প্রথমে আটকে রাখা এবং তারপর শত বছরের পুরোনো আইনে মামলা দেয়ার ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। সাংবাদিকদের সব সংগঠন প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে। সোমবার বিকেল যখন তাকে স্বাস্থ্য সচিবের পিএস-এর কক্ষে তাকে আটকে রাখা হয়েছিল। সেই ঘটনার কিছবি এবং ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে তাকে গলা চেপে ধরে রেখেছেন সচিবালয়ের এক নারী কর্মকর্তা। গত মঙ্গলবার রোজিনা ইসলামকে আদালত থেকে গাজীপুরে কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময়ের ছবি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন করার জন্য নানা সময়ে আলোচনায় আসা রোজিনা ইসলামকে সোমবার রাতে শাহবাগ থানায় রাখা হয়েছিল। পরে মঙ্গলবার সকালে তাকে আদালতে নেয়া হয়। সেদিন জামিন আবেদনের ওপর আংশিক শুনানি হয়েছিল। তবে আদালত রিমাণ্ডে না দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল। সাংবাদিকদের প্রতিবাদের মুখে বুধবার সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্য মন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং আইনমন্ত্রী আনিসুল হক রোজিনা ইসলাম ন্যায় বিচার পাবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। তবে সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও তথ্য মন্ত্রী হাছান মাহমুদ দুজনই রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নথি চুরির যে অভিযোগ এনেছে সেটিই পুনরুল্লেখ করেছেন। তবে সরকারের মন্ত্রীরা যাই বলুন, রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে আটকের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সোমবার বিকেল থেকেই সাংবাদিকরা প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠেন। বুধবার ঢাকায় প্রেসক্লাবের সামনে, সেগুন বাগিচায় রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনে ও কারওয়ান বাজারে সাংবাদিকদের নানা সংগঠন রোজিনা ইসলামের মুক্তির দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করেছে। ঢাকার বাইরে সারাদেশে সাংবাদিকদের সংগঠনগুলোও মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে। ওদিকে জাতিসংঘ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ দেশী বিদেশ নানা সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশে প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন আজ হয়নি। +text: পুরো শ্রীলঙ্কা জুড়ে কারফিউ জারি করা হয়েছে সোমবার সন্���্যা পর্যন্ত কারফিউ চলবে। হামলায় ২৯০জন নিহত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এদিকে ওই হামলায় বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিমের মেয়ের পরিবারের দুইজন সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। রবিবার রাতে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রানিল বিক্রমাসিংহে জানিয়েছিলেন, সম্ভাব্য একটি হামলার বিষয়ে নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর কাছে সতর্কতামূলক তথ্য ছিল। তবে হামলা হলেও, কারা এই হামলা চালিয়েছে, এখনো তা জানাতে পারেনি সরকার। গুজব বা মিথ্যা খবর ঠেকাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুকের মতো জনপ্রিয় সেবাগুলোয় অনেকে প্রবেশ করতে পারছেন না বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। দেশটির প্রধান বিমানবন্দরের কাছাকাছি এলাকা থেকে একটি হাতে বানানো বোমা নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির বিমানবাহিনী। হামলার পর সেন্ট অ্যান্থনি গির্জায় নিরাপত্তাবাহিনীর সতর্ক অবস্থান বাংলাদেশি আহত শ্রীলঙ্কায় হামলার পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম একটি সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, বোমা হামলার ঘটনার পর থেকে এক শিশুসহ দুই বাংলাদেশির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে তিনি কারো পরিচয় জানাননি। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম বাসস জানাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রুনেই সফরের সময় একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিমের মেয়ের পরিবার শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলার শিকার হয়েছে। তিনি বলেছেন,''সেলিমের মেয়ে-জামাই ও নাতি এ সময় একটি রেস্টুরেন্টে খাচ্ছিলেন। সেখান একটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে মেয়ে-জামাই আহত হন এবং (গতকাল) বিকেল পর্যন্ত নাতির কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।'' শেখ ফজলুল করিম সেলিম আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। শাহরিয়ার আলম বলেন, ''আমরা জেনেছি একটি পরিবারের চারজনের মধ্যে দুজন 'রিপোর্টেড' (খোঁজ পাওয়া গেছে)। বাকি দুজনের একজন শিশু ও একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি নিখোঁজ। তবে তাদের নাম-পরিচয় এখনো কিছুই জানা যায়নি। আমরা আশা করছি তাদের কোনো হোটেল বা হাসপাতালে রাখা হয়েছে। আমরা জানতে পারলেই জানিয়ে দেয়া হবে।" হামলার পর আহত এবং নিহতদের বের করা হচ্ছে একটি গির্জা থেকে যেভাবে হামলা হয় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা যখন ইস্টার সানডে পালন করছিল তখন এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। প্রথম হামলা হয় স্থানীয় সময় সকাল পৌনে ৯টায়। তিনটি গির্জায় অন্তত ছয়টি বিস্ফোরণ হয়েছে। যে গির্জাগুলোতে বিস্ফোরণ হয়েছে সেগুলো কোচ্চিকাডে, নেগম্বো এবং বাট্টিকালোয়ায় অবস্থিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নেগম্বোর সেন্ট সেবাস্টিয়ান গির্জার ছাদ বিধ্বস্ত হয়েছে এবং রক্ত ছড়িয়ে আছে। এছাড়া রাজধানী কলম্বোতে অবস্থিত তিনটি পাঁচ তারকা হোটেলে বিস্ফোরণ হয়েছে। কারা এই হামলা চালিয়েছে তা জানা যায়নি, তবে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৩জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকারের ধারণা, কোন কোন স্থানে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী অংশ নিয়েছিল। ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কায় গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এটাই সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী ভয়াবহ হামলা। কলম্বোর গির্জার ভেতরের দৃশ্য হামলার শিকার গির্জার ভেতরের দৃশ্য শ্রীলংকায় বোমা হামলার পর কলম্বোর সেন্ট অ্যান্টনি গির্জার ভেতরে প্রথম ছবিগুলো প্রকাশিত হতে শুরু করেছে। শহরের উপকণ্ঠে এটি খুবই জনপ্রিয় এক গির্জা। বিবিসি সিনহালা বিভাগের সংবাদদাতা আযাম আমীন যখন ঐ গির্জা দেখতে গিয়েছিলেন, তখন তিনি জানান যে সেখানে অন্তত ৩০ জন নিহত হন। গির্জার আশেপাশে এখন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে, এবং পুলিশের তদন্ত চলছে। শ্রীলংকা সম্পর্কে কিছু তথ্য শ্রীলংকার ধর্মীয় স্থানগুলো পর্যটকদের বড় আকর্ষণের জায়গা। ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলংকা গত কয়েকশ বছর ধরে পর্যটকদের আকৃষ্ট করেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাধ্যমে। কিন্তু দেশটিতে বহু বছর ধরে তুমুল গৃহযুদ্ধ চলেছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ সিংহলিজ এবং সংখ্যালঘু তামিলদের মধ্যে এ যুদ্ধ চলেছে দেশটির উত্তর এবং পূর্বাঞ্চলে। ২৫ বছর ধরে চলা সে সংঘাতের অবসান হয় ২০০৯ সালে। সরকারী বাহিনী যখন বিদ্রোহী তামিল টাইগারদের সর্বশেষ শক্ত ঘাটি দখল করে নেয় তখন গৃহযুদ্ধের অবসান হয়। ১৬ শতকের পর পর্তুগীজ এবং ডাচরা শ্রীলংকা নিয়ন্ত্রণ করেছে। ১৫০ বছর ব্রিটিশ শাসনের পর ১৯৪৮ সালে শ্রীলংকা স্বাধীনতা লাভ করে। শ্রীলংকায় অনেক বিদেশী পর্যটক বেড়াতে যায় শ্রীলংকার মোট আয়তন ৬৫৬০০ বর্গ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা দুই কোটি বিশ লাখ। দেশটির মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ বৌদ্ধ। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে হিন্দু জনগোষ্ঠি যারা মোট জনসংখ্যার ১৩ শতাংশ। এছাড়া মুসলিম ১০ শতাংশ এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা ৭ শতাংশ। শ্রীলঙ্কার কলম্বোয় ইস্টার সানডে চলার সময় কয়েক দফা বোমা হামলায় দুই শতাধিক মানুষ নিহত হওয়ার পর দেশজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়েছে। +text: কম্পিউটারের মাধ্যমেই 'ক্রাউড ফান্ডিং' শুরু করেন জোয়ান গার্নার সেই সঙ্গে নিজের নকশা করা ছোটখাটো গয়না দিয়ে আত্মীয় ও বন্ধুদের মাঝেমধ্যেই চমকে দিতেন তিনি। পড়া লেখার পাশাপাশি এটাই তার একমাত্র শখ ছিলো। সে কারণে তিনি বিষয়টি নিয়ে উচ্চতর ডিগ্রী নিতে চেয়েছিলেন। সেই কারণে গয়না আর ধাতব পদার্থের ওপর মাস্টার্স করতে চেয়েছিলেন জো। কিন্তু তার নিজের সামর্থ্য ছিলনা, কোর্সের পুরো অর্থ সংগ্রহের। যে কারণে একদম অচেনা মানুষের কাছে তিনি চেয়েছিলেন অর্থ সাহায্য বা অনুদান বা জন বিনিয়োগ। তিনি বলছেন, ''আমি সব মিলে সাড়ে তিন হাজার পাউন্ড যোগাড় করার চেষ্টা করছিলাম, যা আমার কোর্স ফি'র অর্ধেক। আমার হাতে সময় ছিল মাত্র আট সপ্তাহ বা দুই মাসের মত। ঐ সময়ে আমার অবস্থা হয়েছিল কোন প্রতিষ্ঠানের পূর্ণকালীন গণসংযোগ কর্মকর্তার মত। টুইটারে পোষ্ট দেয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট দেয়া এবং তার ফিডব্যাক কি আসছে, তা খেয়াল রাখা—একহাতে সবকিছু সামলানো! আমি খুবই নার্ভাস ছিলাম।'' স্বর্ণ বা ধাতব বিষয়ে পড়াশোন করতে চেয়েছে মিজ গার্নার, কিন্তু সেটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল ২০১৫ সালে জো নিজের পড়াশোনার জন্য ক্রাউড ফান্ডিং বা জন বিনিয়োগের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহের জন্য প্রচারণা শুরু করেন। শুরুতে বিষয়টি নিয়ে জো খুবই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলেন, যে মানুষ ব্যাপারটিকে কিভাবে নেবে, আদৌ কেউ তার পড়াশোনার খরচ যোগাতে এগিয়ে আসবে কিনা। কিন্তু তার সমসাময়িক শিল্পীরা তাকে আশ্বস্ত করেছিলেন এই বলে যে, ঐ সময়ে এটাই ছিল সবচেয়ে সঠিক পদক্ষেপ। জোয়ান গার্নার বলছেন, ''আমার মা ছিলেন একজন অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক। আর বাবা ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত পেইন্ট ডেকোরেটর। ফলে তারা আমার পড়ার খরচ দেবার মত অবস্থায় ছিলেন না। আর আমিও পড়ার জন্য কোন লোন বা ঋণ একেবারেই নিতে চাইনি।'' জনগণের সহায়তা নিজের পড়াশোন চালিয়ে গেছেন জোয়ান গার্নার ফলে জো যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছেন, তখন দিনরাত কয়েকটি ভাগে কাজ করতে হয়েছে। কেন লোকে আপনার পড়াশোনার খরচ দেবে, সেটি খুব ভালোভাবে এবং বিশ্বাসযোগ্যভাবে ���্যাখ্যা করতে হয়েছে। যুক্তরাজ্যের মত একটি দেশে যেখানে স্নাতক পর্যায়ে পড়াশোনার পরই লোকের কাজকর্ম করে খাওয়া-পড়ার সমস্যা হয়না, সেখানে জো কেন গয়না নকশা নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নিতে চান সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হয়েছে। কিন্তু সাড়া দিতে তাকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়নি। '' আমি খুবই ভাগ্যবান যে প্রথম অনুদান খুব দ্রুতই আসতে শুরু করলো। আমাকে চীন থেকে, অ্যামেরিকা থেকে , নেদারল্যান্ডস---পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ অর্থ পাঠিয়েছে। মানুষের ভালোবাসা পেয়ে আমার এতো ভালো লেগেছে! এই দেশে উচ্চতর পড়াশোনার এত খরচ। জন বিনিয়োগ না পেলে আমার পড়াশোনাই হতো না।'' জোকে যারাই অর্থ সাহায্য পাঠাতেন তারাই তার নিজের হাতে বানানো একটি করে শিল্পকর্ম উপহার পেয়েছেন জোকে যারাই অর্থ সাহায্য পাঠাতেন তারাই তার নিজের হাতে বানানো একটি করে শিল্পকর্ম উপহার পেয়েছেন। শেষ পর্যন্ত জো সাড়ে চার হাজার পাউন্ড জোগাড় করেছিলেন। সেই সঙ্গে খন্ডকালীন চাকরি আর ছাত্রবৃত্তির পয়সায় কোর্স ফি এর বাকিটা উঠে গেছে। রয়াল কলেজ অব আর্টস থেকে গত সেপ্টেম্বরে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন জো। লন্ডনে এখন নিজের একটি ল্যাব হয়েছে তার। সেখানে জো এখন ছোটছোট বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে নানান নকশার গয়না বানান। মেটাল বা ধাতব পদার্থ ব্যবহার করে নানা ধরণের যেসব গয়না তিনি বানাচ্ছেন, তার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে লোকের। এর মধ্যে শিল্প বোদ্ধা যেমন আছেন, তেমনি আছেন ছোট উদ্যোক্তাও। ছোটবেলা থেকে নিজের নকশা করা গয়না পড়তে পছন্দ করতেন জোয়ান গার্নার, বন্ধু ও পরিবারের সদস্যরা যাকে জো বলেই ডাকেন। +text: শীতকালীন অলিম্পিকসে কিম জং আন আর ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো সেজেছেন দু জন ডোনাল্ড ট্রাম্প 'রকেট ম্যান' নাম দিয়েছিলেন কিম জং আনকে। জাতিসংঘে এক ভাষণে মি. ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি উত্তর কোরিয়াকে ধ্বংস করে দেবেন। এর জবাবে কিম জং আন নিজে ট্রাম্পকে বলেছিলেন ডোটার্ড - যা একটি অপেক্ষাকৃত অপ্রচলিত ইংরেজি শব্দ, যার অর্থ 'মানসিক ও শারীরিকভাবে দুর্বল বৃদ্ধ ব্যক্তি'। গত বছর ১৯শে সেপ্টেম্বর কিম তার এক ভাষণে ট্রাম্পকে ডোটার্ড বলার পর সারা দুনিয়ায় অনেক লোককে ইংরেজি অভিধান খুঁজে তার অর্থ জানতে হয়েছিল। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: ট্রাম্প ও কিম: শত্রু থেকে বন্ধু? কিমের আমন্ত্রণে ট্রাম্পের সাড়া ডোনাল��ড ট্রাম্পের টুইট: আমি তো ওকে মোটা আর বেঁটে বলিনি জবাবে ট্রাম্প টুইট করেন, কিম জং আন কেন আমাকে 'বুড়ো' বলে বিদ্রুপ করছে? আমি তো কখনো ওকে 'বেঁটে আর মোটা' বলবো না ! উত্তর কোরিয়ায় কিম পরিবারের অমর্যাদা করাটা মৃত্যুদন্ডযোগ্য অপরাধ। তাই ট্রাম্পের সরাসরি আক্রমণের জবাবে উত্তর কোরিয়ার সংবাদ মাধ্যম তার প্রতি নানা ধরণেরর গালাগালিসূচক শব্দ ব্যবহার করতে শুরু করে। 'বিষাক্ত মাশরুম', 'কীট', 'গুন্ডাদলের সর্দার', 'বুড়ো হাবড়া', 'পাগলা কুকুর', 'উন্মাদ' - ইত্যাদি নানা শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে। কিম জং আন উত্তর কোরিয়ার কেসিএনএ এজেন্সি সেখানকার দুটি ট্রেড ইউনিয়নকে উদ্ধৃত করে লেখে : 'ডোনাল্ড ট্রাম্প একটা 'কীট' এবং কৃষকরা যেসব পশু পালে তাদের চাইতেও অধম", একটা "পাগলা বুড়ো।" গত বছর ২৩শে সেপ্টেম্বর উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় দৈনিক রডং সিনমুন বলে, ট্রাম্প হচ্ছেন "একটা বিগড়ে যাওয়া মানুষ, একটা রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত, একটা গুন্ডা, একটা শিশু।" আমার বোতাম ওদের চাইতে বড়: ট্রাম্পের টুইট মি. ট্রাম্প যখন টুইট করেন যে তার পারমাণবিক বোতাম উত্তর কোরিয়ার চাইতে বড়, তখন রনডং সিনমুন তাকে একজন 'সাইকোপ্যাথ' এবং 'বেপরোয়া পাগল' বলে আখ্যায়িত করে লেখে, তার মন্তব্য হচ্ছে 'পাগলা কুকুরের ঘেউ ঘেউ।' তারা আরো লেখে, সারা বিশ্ব ট্রাম্পের 'মানসিক অসুস্থতা নিয়ে উদ্বিগ্ন।' কেসিএনএ সেদেশের যুব লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিকে উদ্ধৃত করে বলে, 'ট্রাম্প মানুষ নয়, গুন্ডাদের সর্দার, একটা পাগলা কুকুর।' তবে আশা করা চলে, মে মাসে এই দুই নেতার যখন সাক্ষাৎ হবে তখন তারা এরকম ভাষা ব্যবহার করবেন না। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং আনের সাথে মুখোমুখি আলোচনায় বসার এক প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প । হয়তো তারা এখন একটা বন্ধুত্বের সম্পর্কের দিকে এগুচ্ছেন, কিন্তু এই সেদিনও তারা পরস্পরের প্রতি চোখা চোখা বিদ্রু পের তীর ছুঁড়েছেন। +text: নেপালের চিতওয়ান ন্যাশনাল পার্কের গন্ডার (ফাইল ছবি) বন্যায় ভেসে যাওয়া এই গন্ডারগুলোর প্রায় সবারই আবাসভূমি হল নেপালের বিখ্যাত রয়্যাল চিতওয়ান ন্যাশনাল পার্ক। প্রতি বছর দেশ-বিদেশের অসংখ্য পর্যটক এই সংরক্ষিত অরণ্যে গন্ডার ও অন্যান্য বন্য প্রাণী দেখতে আসেন। সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী রয়্যাল চিতওয়ান পার্কে প্রায় ছশোর মতো একশৃঙ্গী গন্ডার আছে। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে নেপালে যে ভয়াবহ বন্যা চলছে তাতে চিতওয়ান অভয়ারণ্যের বহু গন্ডার ভিটেছাড়া হয়েছে। জলের তোড় তাদের ভাসিয়ে নিয়ে গেছে সীমান্তের অন্য পারে ভারতে। নেপালের চিতওয়ান ন্যাশনাল পার্কের একেবারে গা ঘেঁষেই ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বাল্মীকি টাইগার রিজার্ভ - যেটি ভারতে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের অন্যতম প্রধান একটি আবাসভূমি। চিতওয়ান ন্যাশনাল পার্কের কর্মকর্তারা বিবিসিকে বলেছেন, তাদের বেশ কিছু গন্ডার বন্যায় ভেসে গিয়ে ভারতের এই বাল্মীকি টাইগার রিজার্ভে গিয়ে ঠেকেছে বলে তারা জানতে পেরেছেন। এখন এই গন্ডারগুলোকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ভারতের বন্য প্রাণী কর্মকর্তাদের কাছে অনুরোধও জানানো হয়েছে। তবে বন্যার জল আরও না-কমলে গন্ডারগুলো নেপালে ফিরিয়ে দেওয়ার কাজ সহজ হবে না বলেই কর্মকর্তারা মনে করছেন। সারা পৃথিবীতে একমাত্র নেপাল ও ভারতেই একশৃঙ্গী বা এক শিং-ওলা গন্ডার পাওয়া যায়। ফলে এই দুই দেশের কাছেই তাদের এই গন্ডার এক গর্বের সম্পদ। বন্যার জল কমলে নেপালের এই গন্ডারদের কীভাবে আবার ভারত থেকে ফেরত পাঠানো যায়, সেটা দেখার বিষয় হবে। আমাদের পেজে আরও পড়ুন : লাদাখের লেকের ধারে চীন-ভারতের হাতাহাতি ভারতে বন্যা: বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে শত শত ভারতীয় যেভাবে পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জেনেছিলেন শেখ হাসিনা নেপালের বন্য প্রাণী বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, সাম্প্রতিক বন্যায় তাদের দেশ থেকে বেশ কিছু গন্ডার পাশের দেশ ভারতে ভেসে গেছে এবং তারা সেগুলোকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ভারতকে অনুরোধ করেছেন। +text: প্রবাসী বাংলাদেশীরা ভোট দিতে পারবেন একমাত্র জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলে। যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশীরা অভিযোগ করছেন তাদের ভোট দেবার সুযোগ নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন সময়ে আশ্বাস দিলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সে সুযোগ তাদের জন্য অধরাই থেকে যাচ্ছে। যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ একমাত্র পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে। কিন্তু তাদের অভিযোগ ডাকে ব্যালটপেপার চেয়ে দরখাস্ত করা এবং তা হাতে পেলেও তা ডাকযোগে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য যথেষ্ট সময় তাদের হাতে দেয়া হয় নি। ফলে বেশিরভাগ প্রবাসী ভোটারের আশংকা তাদের ব্যালট কাগজ ৩০শে ডিসেম্বরের মধ��যে নির্বাচন কমিশনে পৌঁছানো "এক অর্থে অসম্ভব"। প্রবাসী যেসব বাংলাদেশী তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেছেন এবং ভোটার তালিকায় নাম উঠিয়েছেন - একমাত্র তারাই নির্বাচনের সময় ভোট দিতে পারেন। যারা যুক্তরাজ্যে বসে সেই ভোট দিতে চান, তাদের একমাত্র সুযোগ পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেয়া। যুক্তরাজ্যে যেসব সংগঠন তাদের ভোটাধিকারের দাবিদাওয়া নিয়ে সোচ্চার গত কয়েক দশক ধরে, তাদের মধ্যে একটি হিউম্যান রাইটস অ্যাণ্ড পিস ফর বাংলাদেশ ইউকে। সংগঠনের প্রেসিডেন্ট রহমত আলী বিবিসি বাংলাকে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে প্রবাসীদের পোস্টাল ব্যালটে ভোটদান সম্পর্কে অবহিত করতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ৩০শে নভেম্বর সুস্পষ্ট নির্দেশনা জারি করলেও স্থানীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রবাসীদের মধ্যে সময়মত সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কোন ধরণের প্রচার-প্রচারণার ব্যবস্থা করা হয় নি। "এই পোস্টাল ভোট সম্পর্কে প্রবাসী জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রচারণা চালানোর কথা সেই নির্দেশে বলা হয়েছিল। কিন্তু দু:খের এবং হতাশার বিষয় যে লন্ডনে যে বাংলাদেশ হাইকমিশন আছে, ওনারা এ ব্যাপারে সময়মত কোনকিছুই করেন নি। এটার কোন প্রমাণও নাই। পত্রপত্রিকাতেও আমরা কিছু দেখি নাই। আর বিভিন্নভাবে প্রচার প্রচারণা চালানোর যে সময় ছিল সেটাও চলে গেছে। আমরা আশা করেছিলাম অনেক প্রবাসী এর মাধ্যমে সচেতন হবেন এবং ভোট দেবেন।" "আমারও এই ভোট দেবার অধিকার আছে। কিন্তু এই ভোটের একটা সময়সীমা আছে। এখানে অনেকেই জানেন না এই পোস্টাল ভোট কীভাবে দিতে হয়, পোস্টাল ভোটের সময়সীমাই বা কী, কোন্ সময় তা পাঠাতে হয়। সেই বিষয়গুলা যদি একজন মানুষ না জানে, তাহলে তো তার ভোট দেয়া যায় না," জানান মি: আলী। তবে লণ্ডনে বাংলাদেশ দূতাবাস বলছে, তারা নির্বাচন কমিশনের জারি করা পরিপত্র হাতে পেয়েছে ৬ই ডিসেম্বর। বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পাঠানো এই পরিপত্র সাত তারিখ তারা দূতাবাসের ওয়েবসাইটে আপলোড করেছে। বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারেন: 'এই মুহূর্তে বাংলাদেশে গণতন্ত্র সম্ভবত অস্থিতিশীল' তরুণদের নিয়ে কি আছে নির্বাচনী ইশতেহারে? নির্বাচন কমিশনের জারি করা পরিপত্র লণ্ডনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনিম বিবিসি বাংলাকে বলেন, বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা কীভাবে ভোট দিতে পা��বেন বা পোস্টাল ব্যালট কীভাবে সংগ্রহ করবেন - এ নিয়ে তারা দূতাবাসের সঙ্গে এর আগে কোন যোগাযোগ করেন নি। তিনি বলেন, "এরপর যখন সাংবাদিকদের সঙ্গে আমি মত বিনিময় সভা করি, তখন পোস্টাল ব্যালটে কীভাবে ভোট দিতে হবে তার নিয়ম আমরা তুলে ধরি। আমরা জানিয়ে দেই যে এই পোস্টাল ব্যালটের পুরো বিষয়টা ডাকব্যবস্থার মাধ্যমেই হতে হবে। তখন স্থানীয় সাংবাদিকদের দিক থেকে একটা প্রশ্ন এসেছিল যে প্রথম দরখাস্তটা ইমেলের মাধ্যমে করা যাবে কীনা, তাহলে সময় কিছুটা বাঁচানো যাবে।" "এ বিষয়টা নিয়ে আমরা ইমিডিয়েটলি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করি- প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাথে কথা বলি। এবং অন্তত প্রথম ধাপটা ইমেলের মাধ্যমে করার বিষয়টি বিবেচনার সুযোগ আছে কীনা সেটা জিজ্ঞেস করি। উনি জানান, বিষয়টিতে ওনার হাত-পা বাঁধা। কারণ বাংলাদেশের নির্বাচনী আইন অনুযায়ী- পরিষ্কার লেখা আছে - তিনটি পর্যায়ই পোস্টের মাধ্যমে হতে হবে।" সাঈদা মুনা তাসনিম বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে তিনি কথা বলেছিলেন ১৩ই ডিসেম্বর। এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছিলেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী ভোটারদের দরখাস্ত "তিন-চারদিনের মধ্যে ডাক মারফত তাদের হাতে পৌঁছে গেলে, প্রতিটা পদক্ষেপ তারা তিন দিনে শেষ করবেন। অর্থাৎ তিনদিনের মধ্যে ব্যালটপত্র পাঠাবেন এবং ওনার হিসাবমত তাতে করে ৩০শে ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট দেওয়া সম্ভব হবে।" কিন্তু মি: রহমত আলী বলছেন, এ সময়ের মধ্যে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা বাস্তবসম্মত নয়। তাই এবারের সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়া যুক্তরাজ্যের অধিকাংশ প্রবাসী ভোটারদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তিনি মনে করেন প্রবাসীদের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হলে নির্বাচন কমিশনের হাতে আরও সময় নিয়ে এই পোস্টাল ব্যালট প্রক্রিয়ার কাজ শুরু করা উচিত ছিল। মি: আলী বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তাদের সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যাণ্ড পিস ফর বাংলাদেশ ইউকে প্রবাসীদের ভোটের অধিকার কার্যকর করার দাবিতে প্রচার অভিযান চালাচ্ছে ২০১১ সালের পর থেকে। তাদের দাবির মূল লক্ষ্য : যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে প্রবাসীরা যাতে তাদের পাসপোর্ট দেখিয়ে পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে এবং তাদের নাম ভোটার তালিকার অর্ন্তভূক্ত করতে পারেন এবং দূতাবাসের মাধ্যমে তাদের ভোট দিতে পারেন। যুক্তরাজ্যে প্রায় ৭ লক্ষ প্রবাসী বাং��াদেশীর বাস। তবে লন্ডনে বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত বলছেন, বর্তমান বিধি অনুযায়ী প্রবাসীদের তাদের নিজেদের জেলার রির্টানিং অফিসারের কাছে ভোট দিতে চেয়ে দরখাস্ত পাঠাতে হবে। যিনি ওই দরখাস্তের ভিত্তিতে তাদের পোস্টাল ব্যালটপত্র পাঠাবেন এবং ভোটারকে তার ভোটসহ ব্যালটপত্র ফেরত পাঠাতে হবে তার এলাকার রির্টানিং অফিসারের কাছে এবং সবই হতে হবে ডাক মারফত। "বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার রির্টানিং অফিসারের নাম, যোগাযোগ ইমেল ও ফোন নম্বরসহ গোটা পদ্ধতি ব্যাখ্যা করে আমরা যুক্তরাজ্যে স্থানীয় সংবাদপত্রগুলোকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছি," জানান সাঈদা মুনা তাসনিম। মি: আলী বলছেন প্রবাসীদের অন্যতম মৌলিক একটি অধিকার- ভোটাধিকার। যুক্তরাজ্যে প্রায় ৭ লক্ষ প্রবাসী বাংলাদেশীর বাস। মি: আলী বলেন যে মামলার মাধ্যমে প্রবাসীরা তাদের ভোটাধিকার পেয়েছেন, সেই রিট মামলাটিও করেছিলেন একজন যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশী আলী রেজা খান। তিনি হাইকোর্টে এই মামলাটি দায়ের করা পর সেই মামলার ফলশ্রুতিতে প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রদানের পক্ষে রায় হয়। প্রবাসীদের দাবির মুখে ২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরুর পর তৎকালীন এটিএম শামসুল হুদা কমিশন প্র্রথমবারের মত প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিয়ে উদ্যোগী হয়। তখনকার দুই নির্বাচন কমিশনার ছুহুল হোসাইন এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসাইন এর সম্ভাব্যতা যাচাই করার জন্য যুক্তরাজ্য সফরও করেন। ২০১৪ সালে রকীব উদ্দিন কমিশনও প্রবাসীদের ভোটার করতে উদ্যোগী হন। কিন্তু সে উদ্যোগও বেশিদূর এগোয় নি বলে যুক্তরাজ্য-প্রবাসী বাংলাদেশীদের অভিযোগ। দুই দশক ধরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেওয়ার পক্ষে জোরালো আশ্বাস দিলেও এত বছরেও কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয় নি। যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা মনে করছেন তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে একটা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও তাদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়টি দীর্ঘসূত্রিতা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আটকে রয়েছে। ফলে প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের মতে এবারও একাদশ সংসদ নির্বাচনে অন্তত পোস্টাল ব্যালটে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়ায় তারা ক্ষুব্ধ ও হতাশ। ��িবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: টাকার মালা পরানো নিয়ে যা বললেন মির্জা ফখরুল বরিশালে ছয় আসন কিন্তু সবার দৃষ্টি সদর ও গৌরনদীতে শকুনে নিয়ে গিয়েছিল জাহাঙ্গীরের বড়দিনে দেয়া যে হীরা বাংলাদেশে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশীরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছেন না বলে হতাশা প্রকাশ করছেন। +text: পাকিস্তানের বিশ্বকাপ দলে নেই আমিরের নাম। যেখানে নেই মোহাম্মদ আমিরের নাম। এই ফাস্ট বোলারকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দলে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া আসিফ আলিকেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দলে নেওয়া হয়েছে। আমির শেষ ভালো পারফর্ম করেন ২০১৭ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। তখন থেকে এ পর্যন্ত খেলা ১৪টি ওয়ানডের ৯টিতে কোনো উইকেট পাননি তিনি। আরো পড়ুন: বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলে ইমরুল কায়েস নেই কেন? ক্রিকেট বিশ্বকাপের বাংলাদেশ দলে যারা রয়েছেন পেস বোলিংয়ে আছেন তরুণ দুই মুখ, মোহাম্মদ হাসনাইন ও শাহেন শাহ আফ্রিদি। যারা দুজনই এই শতাব্দীতে জন্ম নেন। নির্বাচক ইনজামাম উল হক বলেন, "হাসনাইনকে তার গতির জন্যই নেওয়া হয়েছে।" "খুব বেশি ওয়ানডে খেলেনি তবে বড় ব্যাটসম্যানদের হিমশিম খাইয়েছে হাসনাইন।" অভিজ্ঞ মুখ মোহাম্মদ হাফিজ ও শোয়েব মালিককে দলে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাদ পড়েছেন - মোহাম্মদ আব্বাস, মোহাম্মদ রিজওয়ান, উসমান শিনওয়ারি ও ইয়াসির শাহ। বৃহস্পতিবার ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করে পাস্তিান ক্রিকেট বোর্ড। তবে জায়গা হয়নি পেসার মোহাম্মদ আমিরের। (ফাইল ছবি) পাকিস্তানের বিশ্বকাপ দল: সরফরাজ আহমেদ (অধিনায়ক) আবিদ আলি বাবর আজম ফাহিম আশরাফ ফখর জামান হারিস সোহেল হাসান আলি ইমাদ ওয়াসিম ইমাম উল হক জুনাইদ খান মোহাম্মদ হাফিজ মোহাম্মদ হাসনাইন শাদাব খান শাহিন শাহ আফ্রিদি শোয়েব মালিক বিবিসি বাংলার আরো খবর: আফসান চৌধুরীর শৈশবের যৌন নিপীড়নের কষ্টের স্মৃতি অভিবাসনের গোপন মাশুল দিচ্ছে শিশুরা ৫০ বছর পরও যে সিনেমা ঘিরে অনেক রহস্য ২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের জন্য ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। +text: আক্রান্তের সংখ্যায়ও ব্যাপক উল্লম্ফন দেখা গিয়েছে। এদিন নতুন আক্রান্ত হয়েছে ১৪, ৮৪০ জন। বুধবারের বৃদ্ধির আগ পর্যন্ত, হুবেই প্রদেশে সংক্রমণ পরিস্থিতিতে কিছুটা স্থিতিশীলতা লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। কিন্তু মৃতের নত��ন এই সংখ্যা করোনাভাইরাসে মৃত্যুর মোট সংখ্যাকে সাড়ে তেরোশ'র উপরে নিয়ে গেলো। আর মোট আক্রান্তের সর্বশেষ সংখ্যা দাঁড়ালো ৬০ হাজার জন। চীনে যত মানুষ সংক্রমিত হয়েছে তার ৮০%ই হুবেই প্রদেশে রয়েছে। এখন অবশ্য যাদের শরীরে রোগের লক্ষণ প্রকাশিত হচ্ছে তাদেরকেও সংক্রমিত হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। করোনাভাইরাস উপদ্রুত এলাকায় গিয়ে যা দেখলো বিবিসি যাদের শরীরে করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখা যাবে, এবং সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে ফুসফুসের সংক্রমণ দেখা যাবে তাদেরকেও করোনাভাইরাস সংক্রমিত বলা হবে। এর আগে যথাযথ পরীক্ষা করে ভাইরাসের উপস্থিতি পেলেই তাকে সংক্রমিত বলা হতো। সম্ভবত নতুন এই সংজ্ঞায়নের কারণে আক্রান্তের সংখ্যার এই উল্লম্ফন একারণেই দেখা গেছে। উহানে বুধবার মারা যাওয়া ২৪২ জনের মধ্যে ১৩৫ জনই ছিলো নতুন এই সংজ্ঞার অধীনে কোভিড-১৯ আক্রান্ত। নতুন এই করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদেরকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখন কোভিড-১৯ বলেই অভিহিত করছে। যার পূর্ণ রূপ হচ্ছে 'করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯'। হুবেইতে এখন ৪৮ হাজার ২০৬ জন নিশ্চিত কোভিড-১৯ রোগী রয়েছে। প্রদেশটির নতুন আক্রান্ত ১৪,৮৪০ জনের মধ্যে ১৩,৩৩২ জনকেই নতুন সংজ্ঞার অধীনে সংক্রমিত বলা হচ্ছে। করোনাভাইরাস: লক্ষণ ও বাঁচার উপায় কী? আরো খবর: প্রথা ভেঙে যৌনকর্মীর জানাজা পড়ালেন মসজিদের ইমাম অনেকেই মালয়েশিয়া যাচ্ছিলেন বিয়ের পাত্রী হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে 'শত্রু সম্পত্তি' নিলামে তুলছে ভারত সরকার রোহিঙ্গা ট্রলারডুবি: নিখোঁজ ৫০ জনকে পাওয়ার আশা ত্যাগ দেওবন্দ 'সন্ত্রাসবাদের গঙ্গোত্রী', বললেন ভারতের মন্ত্রী সিরিয়াকে হুঁশিয়ার করে দিলেন তুরস্কের এরদোয়ান চীনের হুবেই প্রবেশে বুধবার ২৪২ জনের মৃত্যুর ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। বলা হচ্ছে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর এটিই ভয়ালতম দিন। +text: মহামারির শুরু থেকেই সোশাল মিডিয়ায় অনেক ভুয়া খবর ছড়ানো হচ্ছে। 'প্ল্যানডেমিক' নামে পরিচিত এই ভিডিওটি তৈরি হয়েছে ডকুমেন্টারির আদলে। নানা ধরনের ষড়যন্ত্রের ওপর যেসব ভিডিও রয়েছে এর মান তার চেয়ে উন্নত। করোনাভাইরাসের উৎপত্তি এবং তার বিস্তার সম্পর্কে ভিডিওটি ভুয়া মেডিকেল তথ্যে ভরপুর। ছাব্বিশ মিনিটের এই ভিডিওটি আপলোড করা হয় চলতি সপ্তাহের গোড়াতে। এরপর ইউটিউব, ফেসবুক, টুইটার এবং নানা ওয়েবসাইটে এটি দাবানলের মত��� ছড়িয়ে পড়ে। এই ভিডিওতে যেসব দাবি করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে: করোনাভাইরাস ল্যাবরেটরিতে তৈরি হয়েছে, এটি প্রকৃতিগতভাবে তৈরি হয়নি, ফেস মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহার করলে মানুষ আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে, এবং সমুদ্র সৈকত বন্ধ করে দেয়া পাগলামি - কারণ নোনা পানিতে এক ধরনের ক্ষুদ্র কণিকা রয়েছে যার কারণে করোনাভাইরাস সেরে যায়। কিন্তু এসব দাবির কোনটির জন্য ঐ ভিডিওতে কোন ধরনের নির্ভরযোগ্য বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি। সোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের অনেকেই জানেন যে কোথায় আসল খবর পাওয়া যাবে। ভিডিওতে আরও বলা হয়েছে যে করোনাভাইরাসে মৃতের ভুল সংখ্যা প্রচার করা হচ্ছে। উদ্দেশ্য: বিশ্বের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা। লক্ষ লক্ষ মানুষ এই ভিডিও দেখেছে এবং তারপর ফেসুবক, ইউটিউব এবং ভিমিও ভিডিওটি সরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এতে ঐ ভিডিওর নির্মাতারই সুবিধে হয়েছে, কারণ সে দাবি করতে পারছে যে এই ভিডিও মুছে ফেলার প্রচেষ্টাও আসলে বিশ্বব্যাপী এক ষড়যন্ত্রের অংশ। করোনাভাইরাস মহামারিকে কেন্দ্র করে বিপুল পরিমাণ মিথ্যে তথ্য ছড়ানো হবে এই আশঙ্কায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো তাদের নীতিমালায় আগাম পরিবর্তন ঘটায়। টুইটার কর্তৃপক্ষ বলছে, 'অসমর্থিত দাবি' রয়েছে এমন সব পোস্ট তারা ডিলিট করবে। ফেসবুক বলেছে, গ্রাহকরা যাতে নির্ভরযোগ্য তথ্য দেখতে পায় সেজন্য তারা কিছু টুল ব্যবহার শুরু করেছে। ইউটিউব বলছে, "ঐ নির্দিষ্ট ভিডিওটি তারা সরিয়ে দিয়েছে কারণ সেখানে করোনাভাইরাসের ওষুধ সম্পর্কে এমন দাবি করা হয়েছে যার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।" যে সাত ধরনের মানুষ ভুয়া তথ্য ছড়ায় বাংলাদেশে কোন জেলায় কতজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত কেন করোনাভাইরাসে বেশি মারা যাচ্ছে কৃষ্ণাঙ্গ ও এশিয়রা মৃত্যুর মুখ থেকে ফেরা এক বাংলাদেশি ডাক্তারের অভিজ্ঞতা সামাজিক যোগাযোগের প্রধান মাধ্যমগুলো করোনাভাইরাস ষড়যন্ত্র তত্ত্বের ওপর তৈরি এক ভিডিও সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু ইন্টারনেটে দ্রুতগতিতে এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ছে। +text: শাহীনুর নার্গিস দেড় দশক ধরে ঢাকার রাস্তায় মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন। অতি পরিচিত এই তরুণীটি ছাত্র রাজনীতিতেও ছিলেন সামনের সারীতে। আজ দেড় দশক পর এসেও সেই শাহীনুর নার্গিস ঢাকার রাস্তায় মোটরসাইকেল দাবড়ে বেড়ান। "আমি যখন ঢাকার রাস্তায় বাইক চালাতাম তখন ���নে হয় আর কোন মেয়ে বাইক চালাতো না। এখন অনেক মেয়ে স্কুটি চালায়। খুব স্বাচ্ছন্দ্যে সাবলীলভাবে চালায়"। পল্লবীর গৃহবধূ রুনা চৌধুরী। তার লাল রঙের একটি স্কুটি বা ছোট আকারের দুই চাকার স্কুটার আছে। এটিতে করে তিনি দ্বিতীয় শ্রেণী পড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে রোজ স্কুলে যান। বাজার করতে যান। এমনকি ডাক্তার দেখাতেও যান। যখন স্বামী থাকেন তখন কি করেন? "ওরও একটা বাইক আছে। তখন আমি আর আমার ছেলে ওর বাইকে চড়ি", বলছিলেন মিসেস চৌধুরী।। পল্লবীর গৃহবধূ রুনা চৌধুরী। তার লাল রঙের একটি স্কুটি বা ছোট আকারের দুই চাকার স্কুটার আছে। এটিতে করে তিনি দ্বিতীয় শ্রেণী পড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে রোজ স্কুলে যান। প্রতিবেশী ভারতের বিভিন্ন শহরের রাস্তায় এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রচুর তরুণীকে মোটরসাইকেল বা স্কুটার নিয়ে চলাচল করতে দেখা গেলেও বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য শহরে এটি তেমন নিয়মিত কোন দৃশ্য নয়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রুনা চৌধুরী বা শাহীনুর নার্গিসের মতো তরুণীদের স্কুটি নিয়ে চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে। এক হিসেবে জানা যাচ্ছে, ঢাকায় এমন মহিলা বাইক চালকের সংখ্যা শতাধিক হবে। এমনকি এই স্কুটি চালকেরা নানারকম ক্লাবও গড়ে তুলছেন। এগুলোরই একটি বাংলাদেশ ওম্যান রাইডার্স ক্লাব। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে মিলিত হয়েছেন বাংলাদেশ ওম্যান রাইডার্স ক্লাবের দুই সদস্যা। ক্লাবটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইশরাত খান মজলিশ বলছেন, "সমাজের দিক থেকেও এখন মানসিকতা অনেক পাল্টে যাচ্ছে। আমাদের ক্লাবে অনেক সদস্যরা আছে যাদের স্বামী তাদেরকে স্কুটি কিনে দিয়েছেন, রাস্তাঘাটে যানজট এবং যানবাহন পাওয়ার দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে"। মেয়েদের মধ্যে যে স্কুটি বা মোটরবাইক চালানোর প্রবণতা বাড়ছে, তার নজির দেখতে পাচ্ছেন, ঢাকায় মোটরবাইকের একটি বড়সড় বিক্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক জাকারিয়া খান। তিনি বলছেন, তাদের কাছে গ্রাহকদের এবং অনুসন্ধানকারীদের তথ্য সংগৃহীত থাকে। "অনেক সময় মেয়েরা দল বেঁধে স্কুটির খবর নিতে, দাম যাচাই করতে আসছে। স্বামীরা স্ত্রীকে নিয়ে আসছে স্কুটি কিনে দিতে", বলছিলেন মি. খান। ঢাকার একটি বিক্রয়কেন্দ্রে সাজিয়ে রাখা স্কুটি। এরই মধ্যে ঢাকার রাস্তায় নেমে গেছেন বাইশ জন নারী ট্রাফিক সার্জেন্ট। তারা লাল রঙের স্কুটি চালিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, দায়িত্ব পালন করছেন, যেমনটি এতদিন মোটরসাইকেল চালিয়ে করে আসছিলেন তাদের পুরুষ সহকর্মীরা। এই শতকের গোড়ার দিকে যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়েছেন বা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গেছেন, তারা হয়ত দেখে থাকবেন, ছেলেদের মত ছোট করে ছাটা চুলের এক তরুণী, শার্ট-প্যান্ট পড়া, মোটরসাইকেল চালিয়ে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। +text: বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া (ফাইল ছবি) বুধবার বিকালে গুলশানে তাঁর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মিসেস জিয়া বলেন, ''প্রধানমন্ত্রীকে কতগুলো আশ্বাস নিয়ে খালি হাতে ফিরে আসতে হয়েছে। এই সফরকে দেশবাসী শুধু দেওয়ার এবং কিছু না পাওয়ার ব্যর্থ সফর বলে মনে করে।'' জনগণকে অন্ধকারে রেখে ভারতের সঙ্গে সরকার এসব সমঝোতা ও চুক্তি করেছে বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন। খালেদা জিয়া বলছেন, ''ভারতের সঙ্গে আমাদের বৈরিতা নেই। ভারতের সঙ্গে যাবতীয় সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধানে আমরা বিশ্বাসী। কিন্তু এসব চুক্তির বিষয়ে আগে কিছু জানানো হয়নি।'' সাতবছর পর গত ৭ই এপ্রিল ভারত সফরে যান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার একটি সংবাদ সম্মেলনে ওই সফরের বিস্তারিত তুলে ধরেন। সেখানে শেখ হাসিনা বলেন, এই সফর সম্পূর্ণ সফল হয়েছে। খালেদা জিয়া বলেন, ''তিস্তা আমাদের প্রধান চাওয়ার বিষয় ছিল, কিন্তু সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কিছুই অর্জন করতে পারেননি। তাহলে এই সফরের মানে কি?'' তিনি বলেন, ''আমরা উদ্বেগের সঙ্গে আরো লক্ষ করছি যে, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস করার জন্য শুল্ক, অশুল্ক বাধাগুলো দূর করা প্রয়োজন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন পদক্ষেপই গ্রহণ করা হয়নি।'' পরবর্তী পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভারতের প্রভাবের আশংকা আছে কিনা, এমন একটি প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, '' বিএনপি সবসময়ে জনগণের রায়ে ক্ষমতায় এসেছে। আমরা চাই না কোন দেশ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করুক।'' ভারত সফর শেষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী খালি হাতে শুধু কতগুলো আশ্বাস নিয়ে ফিরেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। +text: হাজার হাজার কাচিন জনগোষ্ঠীর লোক ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী কাচিন ইন্ডিপেন্ডেস আর্মির যোদ্ধাদের অবস্থানগুলোর ওপর বিমান হামলা এবং কামানের গোলাবর্ষণ করছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলে হাজার হাজার লোকঘ���বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে চীন সীমান্ত সংলগ্ন এলাকাগুলোয় আশ্রয় নিচ্ছে। জাতিসংঘ বলছে, এ বছর অন্তত ১০ হাজার লোক ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। আর শুধু এপ্রিল মাসেই সেখান থেকে পালিয়েছে চার হাজারের মতো। কাচিন জনগোষ্ঠীর লোকেরা প্রধানত খ্রীস্টান এবং ১৯৬১ সাল থেকে তারা বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে স্বায়ত্বশাসিত এলাকা প্রতিষ্ঠার দাবিতে লড়াই করে যাচ্ছে। কেআইএ বিদ্রোহীদের হাতে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র আছে এবং তারা অন্যতম শক্তিশালী একটি বিদ্রোহী গ্রুপ বলে মনে করা হয়। বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, গত কিছুদিনে পরিস্থিতি গুরুতর রূপ নিয়েছে। খবরে বলা হচ্ছে, সবশেষ এই লড়াইয়ে সরকারি সৈন্যরা কাচিন যোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি ঘাঁটি দখল করে তাদেরকে সীমান্ত এলাকার দিকে ঠেলে দিয়েছে। জাতিসংঘের এক রিপোর্টে বলা হচ্ছে, কাচিন এলাকাগুলোয় বিচার-বহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন এবং যৌন সহিংসতার মতো ঘটনা সাম্প্রতিক কালে ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। সেখানে মানবাধিকার লংঘন বন্ধ করতে ব্যর্থতার জন্য এবং ত্রাণ যেতে না দেয়ার জন্য মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সূচির সমালোচনা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১ লাখ ২০ হাজার কাচিন ঘরবাড়ি ছেড়েছে বলছে জাতিসংঘ বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার কর্মীরা তাদেরকে সেখানে যেতে অনুমতি দেওয়ার জন্যে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে। জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন, এই যুদ্ধের কারণে উত্তর মিয়ানমারে সোয়া এক লাখের মতো মানুষ গৃহচ্যুত হয়েছে। বিদ্রোহীদের একজন মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ৫০ বছরেরও বেশি সময় আগে এই যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এতো তীব্র সংঘর্ষ আর কখনো হয়নি। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: কাচিনে গোলাবর্ষণ করছে বার্মার জঙ্গী বিমান মিয়ানমার-চীন সীমান্তে বিদ্রোহী ও সেনাবাহিনীর লড়াই রোহিঙ্গাদের বাদ দিয়ে মিয়ানমারে শান্তি সম্মেলন মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে কাচিন জনগোষ্ঠীর বাস মিয়ানমার সরকার গত ছ'বছর ধরে বেশ কয়েকটি জাতিগত বিদ্রোহী গ্রুপের সাথে শান্তি আলোচনা চালিয়ে আসছিলো। কিন্তু কাচিন ন্যাশনাল আর্মি এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি না হয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের দাবি হলো, প্রথমেই কাচিনের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করতে হবে। সংখ্যালঘু খ্রীস্টান এই কাচিন জাতিগোষ্ঠীর জন্যে আরো স্বায়ত্বশাসনের দাবিতে এই সশস্���্র লড়াই শুরু হয় ঊনিশশো ষাটের দশকে। মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলে রোহিঙ্গা সঙ্কটের কারণে উত্তরের কাচিন বিদ্রোহীদের সাথে সেনাবাহিনীর সংঘাতের খবর সম্প্রতি খুব একটা নজরে আসেনি। কিন্তু সেখানে যুদ্ধ হঠাৎ করে তীব্র হয়ে ওঠায় হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ পালিয়ে যাচ্ছে। +text: কাতারে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাসের লেবার কনস্যুলার ড. মোস্তাফিজুর রহমান বিবিসিকে এ খবর নিশ্চিত করেছে। তিনি বলেন, গতকাল (রবিবার) রাতে কাতার কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছেন যে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের উপর সাময়িক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এটি সোমবার থেকে কার্যকর হয়েছে। তিনি বলেন, এর ফলে বাংলাদেশ থেকে কোন নাগরিক দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবে না। এছাড়া যারা ছুটিতে এসেছেন তারাও আপাতত ফিরতে পারবেন না। সেই সাথে কাতার থেকেও কোন নাগরিক বাংলাদেশে আসবে না। কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে নারী শ্রমিক কাজ করেন (ফাইল ফটো) তবে এই নিষেধাজ্ঞা কতদিন থাকবে তা নির্দিষ্ট করে জানানো হয়নি। নিষেধাজ্ঞার মুখে থাকা অন্য দেশগুলো হল চীন, মিশর, ভারত, ইরান, ইরাক, লেবানন, নেপাল, পাকিস্তান, ফিলিপিন্স, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা, সিরিয়া এবং থাইল্যান্ড। এরই মধ্যে ইতালিতে সব ধরণের ফ্লাইট বাতিল করেছে কাতার। দেশটিতে রবিবার আরো তিন জন নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছে কাতার। এনিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫ জনে। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর প্রকাশিত তথ্য মতে, ১৯৭৬ সাল থেকে শুরু করে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কাতারে মোট ৮০৮০৯০ জন বাংলাদেশি কর্মরত রয়েছেন। প্রবাসী কর্মীদের সংখ্যার হিসাবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে কাতার পঞ্চম। বিবিসি বাংলার আরো খবর: ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পরও ইতালিতে বেড়েছে মৃতের সংখ্যা মুজিব জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান কাটছাঁট, বিদেশিরা আসছেন না বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত, সতর্ক থাকার নির্দেশনা করোনাভাইরাস নিয়ে হজযাত্রীদের উদ্বেগ কাটাতে চায় সরকার করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সতর্কতার অংশ হিসেবে বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের নাগরিকদের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কাতার। +text: সঙ্গম উপভোগ না করা বা সঙ্গম করতে গিয়ে কষ্ট পাওয়ার এই ব্যাপারটি চিকিৎসা বিজ্ঞানে ডিসপ���যারেনিয়া নামে পরিচিত। ব্রিটিশ জার্নাল অব অবসটেট্রিস অ্যান্ড গাইনোকলোজি ১৬ থেকে ৭৪ বছর বয়সী ৭ হাজার মহিলার উপর এই সমীক্ষাটি চালায়। এদের সবারই রয়েছে নিয়মিত যৌন সম্পর্কের অভিজ্ঞতা। সঙ্গম উপভোগ না করা বা সঙ্গম করতে গিয়ে কষ্ট পাওয়ার এই ব্যাপারটি চিকিৎসা বিজ্ঞানে ডিসপ্যারেনিয়া নামে পরিচিত। এটা সব বয়সী নারীর ক্ষেত্রেই ঘটতে পারে। পঞ্চাশ এবং ষাট বছরের মাঝামাঝি বয়েসী নারীরা এই সমস্যায় ভুগতে পারেন। আবার হতে পারে ১৬ থেকে ২৪ বছরের তরুণীদেরও। এটা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলছেন গবেষকরা। চিকিৎসায় এই সমস্যা ঠিক হতে পারে। গবেষণায় বেরিয়ে আসছে, একজন নারী নানা কারণে বেদনাদায়ক সঙ্গমের অভিজ্ঞতা পেতে পারেন। এটা হতে পারে শুষ্ক যোনি, সঙ্গম চলাকালে উদ্বিগ্ন থাকা কিংবা নিরানন্দ সঙ্গম। তবে যৌনবাহিত কিছু রোগের কারণেও এটা হতে পারে। গবেষণায় অংশ নেয়া কিছু নারী বলছেন, সঙ্গম তাদের এতই বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা দেয় যে তারা সঙ্গম করা থেকে বিরত থাকছেন। আরো পড়ুন: ট্রাম্পকে আলেপ্পোর টুইটার বালিকার খোলা চিঠি ডিসপ্যারেনিয়ার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলছেন গবেষকরা। (ছবিটি প্রতীকি) লন্ডনের ৬২ বছর বয়েসী ক্যারেন (ছদ্মনাম) বলছেন, ৪০ বছর বয়েস থেকে তার এই সমস্যাটা হচ্ছে। তিনি বলছেন, "আমার স্বামী যদিও আমার সমস্যাটা বুঝতে পারতেন, তারপরও তাকে এক পর্যায়ে ভয় পেতে শুরু করি আমি"। ক্যারেন আরেকটি সমস্যার কথা বলেন, কোন কিছু তার যোনিপথ দিয়ে প্রবেশ করানোর উপক্রম করলেই আপনাআপনি তার যোনিপথ সংকুচিত হয়ে যেত। এটা শুধু সঙ্গমের ক্ষেত্রেই নয়, কোন ডাক্তারি পরীক্ষা করতে গিয়েও এটা হত, বলছেন ক্যারেন। পরে তিনি ডাক্তারের শরণাপন্ন হন এবং ডাক্তার তাকে ঔষধ দেন। "মহিলাদের জানা দরকার এ ধরণের সমস্যার জন্য সাহায্য পাওয়ার উপায় আছে। কিন্তু সেটা যথাসময়ে করতে হবে", বলছেন ক্যারেন। "অনেক মহিলা এটা নিয়ে কথা বলতে চান না। আমরা সন্তান জন্ম দেয়ার সময়কার ঘটনা নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিস্তারিত আলাপ করি, কিন্তু আমাদের প্রজন্মের মহিলারা সঙ্গম এবং ঋতুস্রাব নিয়ে খোলাখুলি কথা বলতে আগ্রহী না। আমাদের কথা বলা উচিত"। প্রধান গবেষক ড. ক্রিস্টিন মিচেল বলছেন, শুধু বয়স্ক নারীরাই যে যৌন সমস্যা নিয়ে কথা বলতে বিব্রত হন তা নয়, এই প্রবণতা সব বয়সের ক্ষেত্রেই বিদ্যমান। এদিকে ক্���ানাডায় ২শ জন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর উপর চালানো এক জরিপে দেখা গেছে তাদের অর্ধেকের ক্ষেত্রেই প্রথম সঙ্গমের অভিজ্ঞতা ছিল বেদনাদায়ক। ড. মিচেল এই পরিস্থিতি এড়াতে, তরুণ-তরুণীদের যৌন শিক্ষার মাধ্যমে প্রস্তুত করার উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। বিস্তৃত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ব্রিটেনে প্রায় প্রতি দশ জন নারীর মধ্যে একজনের কাছে যৌন সঙ্গম বেদনাদায়ক একটি কাজ। +text: মহামারি পরিস্থিতিতে আগামী অর্থবছরের বাজেটেও স্বাস্থ্যখাতে এবছরের তুলনায় বরাদ্দ কিছুটা বেশি প্রস্তাব করা হতে পারে। সেজন্য অর্থনীতিবিদদের অনেকে স্বাস্থ্য খাতে সক্ষমতার অভাব এবং ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার প্রশ্ন তুলেছেন। তারা বলেছেন, মহামারি মোকাবেলায় চাহিদার বিপরীতে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে না পারায় ভ্যাকসিন কার্যক্রম থেকে শুরু করে চিকিৎসা সেবা-প্রতিটি ক্ষেত্রেই সংকট থাকছে। পরিকল্পনামন্ত্রী মনে করেন, স্বাস্থ্যখাতে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যবস্থাপনায় ঘাটতির কারণে এমন পরিস্থিতি হচ্ছে। চলতি অর্থ বছরে স্বাস্থ্যখাতের জন্য বাজেটের প্রায় দশ হাজার কোটি টাকার পাশাপাশি থোক বরাদ্দও ছিল দশ হাজার কোটি টাকা। আরও পড়ুন: করোনার ইউকে ভ্যারিয়েন্টের নতুন নাম আলফা, ভারতীয়টি ডেল্টা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণ থেকে সুরক্ষার সাতটি উপায় বাংলাদেশে চিকিৎসা সরঞ্জামের জরুরি কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগ মহামারি মোকাবেলা করার জন্য আগামী অর্থবছরের বাজেটেও স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ চলতি বছরের তুলনায় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হচ্ছে। এবারও প্রস্তাব থাকছে দশ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রাখার। কিন্তু চলতি অর্থবছরেই স্বাস্থ্যখাতে থোক বরাদ্দ এবং বাজেটের অর্থ খরচের ক্ষেত্রে অন্যান্য খাতের তুলনায় একেবারে নীচের দিকে রয়েছে। চলতি অর্থবছরে বরাদ্দের বেশিরভাগই ব্যয় করতে পারেনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, এরে প্রভাবে সরকারি চিকিৎসা সেবার তেমন উন্নতি হয়নি বলে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্যতম একজন অর্থনীতিবিদ ড: আহসান মনসুর বলেছেন, স্বাস্থখাত সব সময় বরাদ্দের ভিত্তিতে পরিকল্পনা নিয়ে তা বাস্তবায়ন বা ব্যয়ের ক্ষেত্রে দুর্বল ছিল। সেই প্রেক্ষাপটে চিকিৎসা সেবার দৈনদশা থাকলেও তা সেভাবে নজরে আসতো না। কারণ সরকারি স্বাস্থ্য সেবার ওপর নিম্ন আয়ের মানুষ বা দরিদ্র জনগোষ্ঠী নির্ভরশীল। ড: মনসুর উ��্লেখ করেছেন, মহামারির কারণে স্বাস্থ্যখাতের দূর্বলতাগুলো আলোচনায় আসছে। সেই সময় আইসিইউ এবং ভেন্টিলেটর সহ বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম বা যন্ত্র বিদেশ থেকে আনা হয়েছিল। কিন্তু সেগুলো বিমানবন্দরেরই পড়ে ছিল কয়েক মাস। এ ঘটনা নিয়ে এখনও সমালোচনা হয়। "থোক বরাদ্দ ছিল দশ হাজার কোটি টাকা। এর বাইরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ ছিল নয় হাজার সাতশ কোটি টাকা। এসব বরাদ্দের চল্লিশ শতাংশও তারা বাস্তবায়ন করতে পারে নাই।" বলেন ড. মনসুর। তিনি আরও বলেছেন, "কেনাকাটার ক্ষেত্রে দেখেছি, ৩৫০টি আইসিইউ এবং শত শত ন্যাজাল ক্যানোলাসহ বিভিন্ন যন্ত্র বিদেশ থেকে এনে ছয় মাস বিমানবন্দরে ফেলে রাখা হয়েছিল। এখানেই প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দূর্বলতার প্রমাণ মেলে" বলে মনে করেন ড: আহসান মনসুর। দেশে গত বছর মহামারি দেখা দেয়ার পর চিকিৎসা সেবা ভেঙে পড়েছিল। অক্সিজেন, আইসিইউ এবং হাসপাতাল আসনের সংকট নিয়ে তখন উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড: ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, স্বাস্থ্যখাতে খরচ করা যে সম্ভব হয়নি, এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে মহামারি মোকাবেলায়। তিনি খরচ করতে না পারা ক্ষেত্রে সক্ষমতার অভাবকে বড় কারণ হিসাবে দেখেন। "ব্যয় করতে না পারার কারণ হচ্ছে, তাদের সক্ষমতার অভাব। তারপর যতটুকু ব্যয় হচ্ছে, সেটা অব্যবস্থাপনা, প্রশাসনিক দূর্বলতা, অনিয়ম এবং দুর্নীতির মধ্যে আটকে থাকছে।" সেজন্য করোনা আসার পর যে ধরনের স্বাস্থ্য অবকাঠামো থাকা দরকার, সেটি একেবারে নাই। সেটা হাসপাতালের বেড, আইসিইউ, অক্সিজেন বা যন্ত্রপাতি-এমনকি মানব সম্পদ ডাক্তার নার্স সহ স্বাস্থ্য কর্মী যা আছে, তা কিন্তু স্বাভাবিক অবস্থার জন্যও যথেষ্ট নয়" বলে তিনি মনে করেন। স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সক্ষমতার অভাাব এবং ব্যবস্থাপনায় দূর্বলতার অভিযোগও তুলেছেন অর্থনীতিবিদরা। উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ ব্যয় করতে না পারার যে সব অভিযোগ বা বক্তব্য আসছে, তা মানতে রাজি নন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেছেন, সরকারি অর্থ ব্যয়ের যে জটিলতা-সেই বাস্তবতায় যতটা করা সম্ভব, তারা তা করেছেন। তবে ব্যবস্থাপনায় ঘাটতির কথা স্বীকার করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। "মহামারি সামলাতে যন্ত্রপাতির জন্য আমরা নিয়ম ভেঙে বিশ্বব্যাংক এবং এডিবি'র সাপের্টের দু'টো প্রকল্পকে একসাথে করে দিয়েছিলাম। কিন্তু ব্যয়টা যতটা গতিতে আশা করেছিলাম, ততটা হয়নি। একটা গ্যাপ আছে অবশ্যই।" মন্ত্রী মি: মান্নান আরও বলেছেন, "আমরা একটা গ্যাপে পড়ে গেলাম। সেজন্য ভ্যাকসিন নিয়ে সমস্যা হলো। দোষারোপের প্রশ্ন নয়, এটা বাস্তব। এখন আমাদের ভ্যাকসিনের জন্য অন্য জায়গায় যেতে হচ্ছে। সুতরাং টাকা আমাদের রাখতেই হবে। সেজন্য থোক বরাদ্দ এবারও বাড়ছে এবং থোক বরাদ্দও রাখা হচ্ছে।" এখন আগামী অর্থ বছরের বাজেট সংসদে পেশ করার কথা রয়েছে ৩রা জুন। বিবিসি বাংলার অন্য খবর: তিন কাশ্মীরি যুবকের ঘটনায় ভারতের ব্যাখ্যা চান জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা যেভাবে গরম বাড়ছে বাংলাদেশের ৫টি বড় শহরে যে পাঁচটি কারণে বাংলাদেশে পহেলা জুলাই থেকে অবৈধ ফোনসেট বন্ধ হয়ে যাবে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস মহামারির বছরেও সরকার স্বাস্থ্যখাতের জন্য বাজেটে বরাদ্দ করা অর্থের বেশিরভাগ খরচ করতে পারেনি। +text: রাজ্য সরকার বলছে, এপর্যন্ত ৩৬৬ জন ভিক্ষুককে ধরা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১২৮ জনকে পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে আর ২৩৮ জন আর ভিক্ষা করবেন না এই প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর তাদেরকে বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়েছে আগামী ১৫ই ডিসেম্বর থেকে তারা ভিক্ষুক-মুক্ত শহর হিসেবে ঘোষণা করেছেন। শহরের পুলিশ কমিশনার এই লক্ষ্যে আগামী দু'মাস ভিক্ষাবৃত্তিকে নিষিদ্ধ করেছেন। সমালোচকরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্পের সফরকে কেন্দ্র করে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে কর্মকর্তারা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। গত সপ্তাহে পুলিশকে বাস ও রেল স্টেশন থেকে ভিক্ষুকদের ধরে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। তারপর তাদেরকে পাঠয়ে দেওয়া হয়েছে হায়দ্রাবাদের কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে। ইভাঙ্কা ট্রাম্প একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে নভেম্বর মাসের শেষের দিকে হায়দ্রাবাদে যাবেন বলে কথা রয়েছে। এর আগে ২০০০ সালে প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন যখন গিয়েছিলেন তখনও হায়দ্রাবাদে একই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিলো। তবে সেটা ছিলো সাময়িক। "কারা কর্তৃপক্ষ থেকে ৫০০ রুপি উপহার দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তাদেরই একটি বিভাগ শহরটিকে ভিক্ষুক-মুক্ত করার জন্যে কাজ করছে," বলেন পুনর্বাসন কেন্দ্রের একজন কর্মকর্তা এম সাম্পাত। তিনি জানান, এই ভিক্ষুকদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে যাতে তাদের পেট্রোল স্টেশনগুলোতে কাজ করতে পারে। আরো পড়ুন: রোহিঙ্গা নির্যাতন: মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সাফাই ভিক্ষুকদের পাঠানো হচ্ছে একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে রাজ্য সরকার বলছে, এপর্যন্ত ৩৬৬ জন ভিক্ষুককে ধরা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১২৮ জনকে পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে আর ২৩৮ জন আর ভিক্ষা করবেন না এই প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর তাদেরকে বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর আগে তাদের কাছ থেকে বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করে রাখা হয়। কর্মকর্তারা বলছেন, এই অভিযান শুরু হওয়ার পর প্রায় ৫,০০০ ভিক্ষুক পাশের অন্যান্য শহরে চলে গেছেন। এখন তাদের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এই ভিক্ষুকরা যাতে হায়দ্রাবাদ শহরে ফিরে আসতে না পারেন তার ব্যবস্থা করা। ভারতে হায়দ্রাবাদের কর্মকর্তারা তাদের শহরকে ভিক্ষুক-মুক্ত করার একটি পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছে যেখানে একজন ভিক্ষুককে ধরিয়ে দিতে পারলে নাগরিকদেরকে ৫০০ রুপি দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। +text: বাংলাদেশে মাদকবিরোধী অভিযান অনেক পরিবারে দুর্যোগ নিয়ে এসেছে বিবিসি বাংলাকে তিনি বলছেন, "প্রথম প্রথম ওরা ফ্রি ইয়াবা দিতো, খাওয়ার ব্যবস্থাও বন্ধুরাই করে দিতো। তখন আমি বুঝতেও পারছিলাম না, আমার কোন ধারণাও ছিল না যে, কী ভয়াবহ বিপদে জড়িয়ে পড়ছি!" তিনি বলছেন, ইয়াবা খেলে কী হয়, এর ক্ষতির দিকগুলো কী - এ সম্পর্কে তাকে কেউ কখনো সচেতন করেনি। তবে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ার পর যখন পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি বুঝতে পারেন, তখন তারা তাকে ভালো করার অনেক চেষ্টা করেন। নানা ভাবে বোঝান। রিহ্যাবে ভর্তি করেন। কয়েক দফা রিহ্যাবে চিকিৎসার পর তিনি এখন সুস্থ হয়েছেন। বিয়ে হয়েছে, একটি সন্তানও রয়েছে। কিন্তু এই তরুণীর মতো বাংলাদেশের আরো অনেক তরুণ-তরুণী বলছেন, তারা যখন মাদকে আসক্ত হন, তখন এর অপকারিতা বা ক্ষতির দিক সম্পর্কে তারা জানতেন না। নিছক আগ্রহ বা বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে তারা এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ইয়াবা এখন বাংলাদেশে সবচেয়ে ভয়াবহ মাদক গবেষণায় কী আছে বাংলাদেশের নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষক অধ্যাপক এমদাদুল হক ২০১৮ সালে একটি গবেষণায় বলেছেন, দেশটিতে প্রায় ৭০ লক্ষ মাদকাসক্ত রয়েছে, যাদের অধিকাংশই ইয়াবাসেবী। এছাড়া আছে ফেন্সিডিল, হেরোইন এবং অন্যান্য মাদক। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, এতদিন এ বিষয়টা খোলামেলা ভাবে আলোচিত হয় নি, কিন্তু পরিস্থিতি সত্যি ভয়াবহ। ঢাকায় নেশাখোরদের এক আড্ডা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাদকাসক্তদের নিয়ে পারিবারিক বা সামাজিকভাবে লুকোছাপার কারণে একদিকে যেমন আসক্তদের চিকিৎসা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি মাদকাসক্তি ঠেকাতেও সমস্যা তৈরি হচ্ছে। সচেতনতা তৈরি হয়েছে কতটা মুক্তি ক্লিনিক নামের একটি নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালক ড. আলী আশকার কোরেশী বিবিসি বাংলাকে বলছেন, এটা ঠিক যে, মাদক নিয়ে পারিবারিক, সামাজিকভাবে সচেতনতার ব্যাপারে একটা ঘাটতি আছে। "মাদক দ্রব্যের ভয়াবহতা নিয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে, তবে তা এখনো অনেক অপ্রতুল বলা যায়। কারণ শহর এলাকা ছাড়িয়ে মাদক এখন তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে গেছে এবং তরুণরা ব্যবহার করছে"। "যতটুকু প্রতিরোধমূলক কর্মকাণ্ড হচ্ছে, তাও হচ্ছে বড় শহর এলাকায়, তৃণমূল পর্যায়ে আসলে সেরকম প্রচারণা নেই। কিন্তু গ্রামে-গঞ্জে মাদক পাওয়া যাচ্ছে এবং অনেক তরুণ-তরুণী আসক্ত হয়ে পড়ছে" - বলছেন মি. কোরেশী। "শিক্ষা কার্যক্রমে ইদানীং কিছু কিছু প্রচারণা বা সচেতনতার উদ্যোগ শুরু হয়েছে, কিন্তু তাও পর্যাপ্ত নয়। কারণ প্রতিটি স্কুল-কলেজে এ ব্যাপারে সচেতনতার উদ্যোগ থাকা দরকার" বলছিলেন তিনি। তিনি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছেন, "যখন আমরা মাদকাসক্ত রোগীর চিকিৎসা করতে যাই, তখন দেখি তাদের অভিভাবকদেরই এ সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। এমনকি সন্তান মাদকে আসক্ত জানার পরেও তাদের মনোভাব থাকে, দেখি না কী হয়। এভাবে কয়েক বছর পার হয়ে যায়, আর তাদের সন্তান মাদকে গভীরভাবে জড়িয়ে পড়ে"। "শুধু মাদকে আসক্ত নয়, তাদের পরিবার, পিতামাতার আগে সচেতন হওয়ার দরকার। যখনি কেউ সন্তানের মধ্যে আচার-আচরণের পরিবর্তন দেখতে পাবেন, তখনই তার উচিত হবে একজন বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া" তিনি বলেন। মাদক নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালক ড. আলী আশকার কোরেশী বলছেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান বা সচেতনতা শুরু করতে হবে পরিবার থেকে। সামাজিকভাবে এর বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করতে হবে, না হলে শুধু সরকার বা এনজিওর ওপর নির্ভর করে মাদকের এই বিপুল বিস্তৃতি ঠেকানো যাবে না। মাদকবিরোধী অভিযানে কি কাজ হচ্ছে? বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন, ২০১১ সালে মাদক সংক্রান্ত মামলা হয়েছিল ৩৭ হাজার ৩৯৫টি, আসামি ছিল ৪৭ হাজার ৪০৩ জন। ২০১৭ সালে মামলার সংখ্যা ১ লাখ ছয় হাজার ৫৩৬ জন, আসামি এক লাখ ৩২ হাজার ৮৮৩ জন। তারা বলছেন, ইয়াবা পরিবহনে সুবিধাজনক, দামও কম আর মিয়ানমার থেকে প্রচুর যোগান আসছে, এসব কারণে এই মাদকটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। সরকারের মাদক বিরোধী অভিযানে অনেক সন্দেহভাজন মাদক ব্যবসায়ী নিহত বা গ্রেপ্তার হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, মাদক ব্যবসায় রোহিঙ্গা থেকে শুরু করে নানা পেশাজীবী, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, ব্যবসায়ী, ছাত্র-ছাত্রীরা জড়িয়ে পড়েছে। সরকারের মাদক বিরোধী অভিযানে অনেক সন্দেহভাজন মাদক ব্যবসায়ী নিহত বা গ্রেপ্তার হয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আত্মসমর্পণ বা অভিযান অব্যাহত রাখার ঘটনার পরও ইয়াবাসহ অবৈধ মাদক পাচার বা এর ব্যবসার প্রত্যাশা অনুযায়ী কমেনি। এর কারণ হিসাবে তারা বলছেন, মাদক বিরোধী অভিযান চললেও, এখনো মাদকে আসক্ত তরুণদের এ থেকে পুরোপুরি সরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। ফলে এর ব্যবসাও বন্ধ হচ্ছে না। তবে বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ জামাল উদ্দীন আহমেদ বলছেন, মাদকের ক্ষতি ও অপব্যবহার নিয়ে তাদের প্রচারণামূলক কর্মকাণ্ডে একসময় ঘাটতি থাকলেও, এখন তারা সেসব কর্মকাণ্ড অনেক বাড়িয়েছেন। "এটা ঠিক যে, এসব কার্যক্রম সম্প্রতি বিস্তৃত করা হয়েছে। এটা স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, মাদক নিয়ে এতো কথা বা চর্চা অতীতে কখনো হয়নি। মাদক একটি অবহেলিত বিষয় ছিল, ভেতরে ভেতরে মাদক যে আগ্রাসন চালাচ্ছে, আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে, সেই সচেতনতা আমাদের ছিল না" - বলছিলেন মি. আহমেদ। নেশার কবলে ঝড়ে পড়ছে অনেক সুস্থ প্রাণ। তিনি আরো বলছিলেন "অভিযান চালানোর পাশাপাশি আমরা মাদকের চাহিদা হ্রাস করার নানা কর্মসূচী নিয়েছি। সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় ব্যানার ফেস্টুন ঝুলিয়ে, বিতর্ক কর্মসূচী, র‍্যালি, নানা ধরণের কর্মসূচীর মাধ্যমে মাধ্যমের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করছি। গত বছরে সারাদেশে আমরা ছোটবড় মিলিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে প্রায় ৯ হাজার সমাবেশ করেছি"। ''বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায় থেকে সামাজিকভাবে এর বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির একটি চেষ্টা আমরা করছি।'' এর মধ্যে ২৮ হাজারের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাদক বিরোধী একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। সেখানে মাদকের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির চে��্টা করা হচ্ছে। মহাপরিচালক মোঃ জামাল উদ্দীন আহমেদ বলছেন "এখনো এটা সত্যি যে, সমাজের সবাই যে সমানভাবে জাগ্রত হয়েছে তা নয়। তবে তাদের জাগিয়ে তোলার কাজটা শুরু হয়েছে"। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন: বৃষ্টি নামবে কবে? বাংলাদেশ, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের সেমিফাইনালের হিসাব সুইমিং পুলে বুরকিনি পরে নিষেধাজ্ঞা ভাঙ্গলেন নারীরা কলেজে পড়ার সময় ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মাধ্যমে ইয়াবায় আসক্ত হয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জের বিশ বছরের এক তরুণী। +text: নাফ নদীর ঐ পাড়ে মিয়ানমার শুক্রবার ভোরের এ হামলায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সাত সদস্য নিহত হয়েছে। সামরিক বাহিনৗ ও সশস্ত্র বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে এ খবরটি নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও এএফপি। পশ্চিমাঞ্চলীয় এ রাজ্যটিতে গত ডিসেম্বর থেকেই আরাকান আর্মি ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ জোরদার হতে থাকলে নতুন করে সহিংসতা শুরু হয়। জেনে রাখুন: রোহিঙ্গা ইতিহাস নিয়ে সাতটি বিচিত্র তথ্য সেন্ট মার্টিন দ্বীপ যেভাবে বাংলাদেশের অংশ হলো জাতিসংঘ তদন্ত: মিয়ানমার সেনা কর্মকর্তাদের কী হবে? ২০১৭ সালে এই রাখাইনে ভয়াবহ সেনা অভিযানের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছিলো। জাতিসংঘ বলছে আরাকান আর্মির সাথে সাম্প্রতিক লড়াইয়ের জের ধরে আরও আড়াই হাজার বেসামরিক নাগরিককে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। আরাকান আর্মির মুখপাত্র খিন থু খা রয়টার্সকে বলেছেন তারা চারটি পুলিশ পোস্টে হামলা চালিয়েছে ও পরে সাতটি 'শত্রু' মৃতদেহ ছিনিয়ে নেয়। তারা নিরাপত্তা বাহিনীর আরও বার জনকে আটক করেছে বলে দাবি করেন তিনি। "তাদের বিষয়ে আমরা আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করবো। তাদের কোনো ক্ষতি করবোনা"। রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছিলো তিনি বলেন, "মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গত কয়েক সপ্তাহে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে যে হামলা চালিয়েছে তার জবাবেই এ হামলা চালানো হয়েছে"। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী গত মাসেই দেশটির উত্তর ও উত্তর পূর্বাঞ্চলে বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপের সাথ শান্তি আলোচনা শুরুর জন্য চার মাস লড়াই বন্ধের কথা জানিয়েছিলো। যদিও রাখাইন এর আওতায় ছিলোনা। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম মঙ্গলবারেও একই গোষ্ঠীর হাতে আরেকটি হামলার খবর দিয়েছ���লো। সেনা মুখপাত্র ঝাও মিন তুন রয়টার্সকে বলেছেন শুক্রবারের হামলার জবাব দিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। যে চারটি পুলিশ পোস্টে হামলা হয়েছে সেগুলো বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া। তিনি বলেন নিরাপত্তার স্বার্থে ওই অঞ্চলে সেনা অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে কতজন এবারের হামলায় নিহত হয়েছে সে সম্পর্কে তিনি কিছু বলতে রাজী হননি। তিনি বলেন ওই এলাকায় বৌদ্ধ নৃ গোষ্ঠীরা বসবাস করে এবং তারা মিয়ানমারের নাগরিক। এরা রাখাইনে থাকলেও রোহিঙ্গা নয় বলে নিশ্চিত করেন তিনি। ঝাও মিন তুন বলেন ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের ৭১বছর পূর্তিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের কয়েক মিনিট পর থেকেই হামলা শুরু হয়। অং সান সু চি যদিও আরাকান আর্মির খিন থু খা স্বাধীনতা দিবসের সাথে এই হামলার সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন। "আমরা এখনো স্বাধীন নই। এটা আমাদের স্বাধীনতা দিবস নয়," রাখাইনে বৈষম্যের কথা উল্লেখ করে তিনি এ মন্তব্য করেন। ওদিকে এএফপি জানায় আরাকান আর্মি রাখাইনে বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসন চাইছে। তাদের অভিযোগ পুলিশ পোস্টগুলোকে সামরিক বাহিনী আর্টিলারি হিসেবে ব্যবহার করছে। "দু সপ্তাহ আগে সেনাবাহিনী পুলিশকে যুদ্ধের মধ্যে নিয়ে আসে এবং সারাদিন ধরে সামরিক হেলিকপ্টার থেকে গুলি বর্ষণ হয়েছে"। এদিকে সম্প্রতি যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে সেটি সামরিক বাহিনী একতরফা ভাবেই করেছে। আরাকান আর্মির দাবি রাখাইনের শক্তি বৃদ্ধির জন্যই এটি করেছে সেনাবাহিনী। যদি পর্যবেক্ষকরা নতুন করে সেনা মোতায়েনের আর কোন ইঙ্গিত পাননি বলে জানাচ্ছেন। মিয়ানমারের স্বাধীনতা দিবসে রাখাইনে বৌদ্ধ বিদ্রোহীরা চারটি পুলিশ পোস্টে হামলা চালিয়েছে। +text: ধর্ষণকারীদের 'ক্রসফায়ারে' হত্যার সমর্থনে কয়েকজন সংসদ সদস্য সংসদে বক্তব্য দিয়েছেন তিনি বলেছেন, এনকাউন্টার বা ক্রসফায়ারকে সরকার এবং দল সমর্থন করে না। মানবাধিকার সংগঠনগুলো ক্রসফায়ার বা এনকাউন্টারের পক্ষে দেয়া বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। এদিকে আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির যে সংসদ সদস্যরা এমন বক্তব্য দিয়েছিলেন, তারা সরাসরি ক্রসফায়ার বা এনকাউন্টারের দাবি করার বিষয় অস্বীকার করেছেন। ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে ক্রসফায়ার বা এনকাউন্টার চেয়ে সংসদে যে বক্তব্য এসেছে, তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বন্দুকযুদ্ধ, ক্রসফায়ার বা বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ নিয়ে তা বন্ধের দাবি করে আসছে। কিন্তু আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো এবং সরকার এসব অভিযোগ কখনও স্বীকার করেনি। এমন প্রেক্ষাপটে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং তাদের মিত্র জাতীয় পার্টির কয়েকজন সদস্য যখন খোদ সংসদে ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধে হত্যার সমর্থনে বক্তব্য দিয়েছেন, তখন সেই বক্তব্য ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। তবে এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এমন বক্তব্য সেই সংসদ সদস্যদের একান্তই ব্যক্তিগত। "যারা বক্তব্য রেখেছেন এনকাউন্টারের পক্ষে, আমার মনে হয়, এটা তাদের ব্যক্তিগত মতামত। এটা সরকার বা দলের কোনো বক্তব্য নয়। আমরা এনকাউন্টার বা ক্রসফায়ারকে সাপোর্ট করতে পারি না। এটা সংবিধানের আওতার বাইরে। কারণ এটা সংবিধান সম্মত নয়।" বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: “বন্দুকযুদ্ধ নিয়ে স্বাধীন তদন্তের সুযোগ নেই” 'মাদক ব্যবসার চেয়ে ক্রসফায়ারে হত্যা বড় অপরাধ' 'বন্দুকযুদ্ধের' ঘটনায় আইনি প্রতিকারের উপায় কী মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা মনে করেন, সংসদে কোনো সদস্য যখন বক্তব্য দেন, তিনি জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে তা করে থাকেন। সেখানে কারও ব্যক্তিগত কোনো মতামতের বিষয় নেই। শীপা হাফিজা বলছিলেন, সংসদে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সমর্থনে বক্তব্যে তারা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। "আমরা খুবই বিস্মিত। এবং বার্তাটা হচ্ছে তাহলে কি পার্লামেন্ট দেশের আইনকে যথোপযুক্ত মনে করেন না বা কার্যকরী মনে করেন না। দেশের বিচারবিভাগকে কি কার্যকরী মনে করেন না? এরকম একটা আশংকা আমাদের মাঝে আসে।" মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইতিমধ্যে এই বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। গত ১৪ই জানুয়ারি মঙ্গলবার সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে বন্দুক যুদ্ধের কথা বলে এনিয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেছিলেন। সংসদের রেকর্ডে তার এই বক্তব্য রয়েছে। তবে তিনি বিবিসির সাথে আলাপকালে বন্দুকযুদ্ধ, ক্রসফায়ার বা এনকাউন্টারের সমর্থনে বক্তব্য দেয়ার বিষয় স্বীকার করেননি। সেই আলোচনায় অংশ নেয়া অন্যরাও সরাসরি এমন কোনো বক্তব্য দেয়ার বিষয় ���স্বীকার করেছেন। তবে রেকর্ডে দেখা যায়, জাতীয় পার্টির সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ বলেছিলেন, ১০/১২ ক্রসফায়ার ঘটলেই ধর্ষণের ঘটনা কমে আসবে। তিনি এখন বিবিসিকে বলেছেন, ধর্ষণের মামলায় যেহেতু সাক্ষী পাওয়া যায় না। সেকারণে এসব মামলা বছরের পর বছর ঝুলে থাকছে। পলে এই অপরাধ কমছে না। বরং উদ্বেগ বাড়ছেই। এমন প্রেক্ষাপট বিবেচনায় তিনি মাদক এবং জঙ্গি দমনের মতো ধর্ষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন। তরিকত ফেডারেশনের নেতা নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর বক্তব্য ছিল, তাঁর ভাষায় ধর্ষকদের ক্রসফায়ার করলে বেহেস্তে যাওয়া যাবে। আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা তোফায়েল আহমেদও সংসদে সেই আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু কেন এমন বক্তব্য দিয়েছেন-এই প্রশ্নে মি: আহমেদ বলেছেন, "আসলে পার্লামেন্টে জাতীয় পার্টির দু'জন সদস্য বক্তব্য রেখেছেন। তারা বিভিন্ন দেশের উদাহরণ তুলে ধরেছেন। এই যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যখন একজনকে আক্রমণ করে, তিনি কিন্তু নাই। স্পটেই ডেথ। ভারতে বাস থেকে নামার পর একজন ডাক্তার মেয়েকে চারজন ধর্ষণ করেছে। চারজনকেই ক্রসফায়ার দিয়েছে। তারপর আর ভারতে এমন ঘটনা ঘটে নাই।" তিনি আরও বলেছেন, "এজন্য প্রশ্ন উঠেছে যে যারা ছোট শিশুদের সাথে এমন পাশবিক নির্যাতন করে, তাদের পৃথিবীতে বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নাই। যখন চিহ্নিত হচ্ছে যে এই লোকটা ধর্ষণের পর হত্যা করেছে, সেগুলোর বিরুদ্ধেতো স্পটেই ব্যবস্থা নেয়া উচিত। সেই কথা বলা হয়েছে।" বাংলাদেশে ধর্ষণকারীদের 'ক্রসফায়ারে' হত্যার সমর্থনে কয়েকজন সংসদ সদস্য সংসদে যে বক্তব্য তুলেছেন, সেটা তাদের ব্যক্তিগত মতামত বলে উল্লেখ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। +text: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তির সন্ধান এখনো চলছে তাকে বলা হয় 'পেশেন্ট জিরো' - এবং নিংসন্দেহে তিনিই চলমান এই করোনাভাইরাস সংক্রমণের উৎস। কিন্তু কে তিনি - চীনের কর্তৃপক্ষ আর বিশেষজ্ঞরা এ নিয়ে একমত নন। তাকে চিহ্নিত করতে অনুসন্ধান এখনো চলছে। আরো একটা প্রশ্ন : এটা জানার কি আদৌ কোন প্রয়োজন আছে? বিজ্ঞানীরা বলেন, হ্যাঁ আছে। চীনের উহান শহরের সেই খাবারের বাজার যেখান থেকে করোনাভাইরাস প্রথম ছড়ায় পেশেন্ট জিরো-কে খুঁজে বের করা প্রয়োজনীয় কেন? যে কোন একটা বিশেষ ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণজনিত রোগে আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তিট���কে বলা হয় 'পেশেন্ট জিরো।' তাকে চিহ্নিত করা জরুরি এই জন্য যে - তাহলে কেন, কিভাবে এবং কোথায় এই সংক্রমণের সূচনা হয়েছিল, তা জানা সহজ হবে। সংক্রমণের হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করা এবং ভবিষ্যতে এর প্রাদুর্ভাব ঠেকানো দু-কারণেই পেশেন্ট জিরোকে চিহ্নিত করা জরুরি। করোনাভাইরাসের পেশেন্ট জিরো কে তা কি আমরা জানি? এক কথায় এর উত্তর হচ্ছে - না, জানি না। চীনের কর্তৃপক্ষ বলছে, সেখানে প্রথম করোনাভাইরাস কেস ধরা পড়ে ৩১শে ডিসেম্বর, এবং চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের একটি সামুদ্রিক খাবার ও পশুপাখীর বাজারের সাথে এর প্রথম সংক্রমণগুলোর সম্পর্ক আছে। আরো পড়তে পারেন: করোনাভাইরাস: লক্ষণ, প্রতিরোধ ও আরো দশটি তথ্য করোনাভাইরাসের উৎপত্তি কোথায়, কেন এতো প্রাণঘাতী মাস্ক পরে কি ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানো যায়? নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস চীনে যে ৭৫ হাজারেরও বেশি লোকের দেহে এ সংক্রমণ ঘটেছে - তার ৮২ শতাংশই নিবন্ধিত হয়েছে এই হুবেই অঞ্চল থেকে। এ তথ্য জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির। কিন্তু চীনা গবেষকদের এক জরিপ যা ল্যান্সেট সাময়িকীতে প্রকাশিত হয় - তাতে বলা হয় কোভিড নাইনটিন ভাইরাসে সংক্রমণ চিহ্নিত হয় একজন লোকের দেহে ২০১৯ সালের পহেলা ডিসেম্বর। এবং, সেই ব্যক্তিটির সাথে উহান শহরের ওই বাজারের কোন সম্পর্ক ছিল না। ওই জরিপের অন্যতম প্রণেতা এবং উহানের জিনইন্টান হাসপাতালের ডাক্তার উ ওয়েনজুয়ান বলেন, প্রথম রোগীটি ছিলেন একজন বয়স্ক পুরুষ যিনি আলঝেইমার্স ডিজিজ-এ আক্রান্ত ছিলেন। তিনি যেখানে থাকতেন সেখান থেকে ওই বাজারে যেতে চার-পাঁচবার বাস বদলাতে হয়। তা ছাড়া তিনি অসুস্থ থাকায় বাড়ি থেকেও বেরুতেন না। তবে এটা ঠিক যে প্রথম দিকে যে ৪১ জন সংক্রমণের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন - তার মধ্যে ২৭ জনই উহানের সেই বাজারের সংস্পর্শে এসেছিলেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করে, খুব সম্ভবত প্রথম একটি জীবিত প্রাণী থেকে মানুষে সংক্রমণ ঘটেছিল, এবং তার পর সেই মানুষটি থেকে অন্য মানুষে সংক্রমণ ঘটে। একজন লোক থেকে কি এত বড় আকারে রোগ ছড়াতে পারে? ইবোলা রোগের ভাইরাস প্রথম চিহ্নিত হয়েছিল ১৯৭৬ সালে, কিন্তু ২০১৪ থেকে ২০১৬ সালে পশ্চিম আফ্রিকায় যে ইবোলার প্রাদুর্ভাব হয় - সেটাই ছিল সবচেয়ে বড় আকারের। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী এতে মারা যায় ১১ হাজারের বেশি লোক, আর সংক্রমিত হয়েছিল ২৮ হাজার। ইবোলা রোগের উৎস ছিল গিনির মেলিয়ান্দো গ্রামের দু'বছর বয়সের একটি শিশু দু বছর ধরে চলা এ সংক্রমণে আক্রান্ত লোক পাওয়া গিয়েছিল ১০টি দেশে। এর মধ্যে আফ্রিকান দেশ ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, যুক্তরাজ্য এবং ইটালিও আছে। বিজ্ঞানীরা নানা পরীক্ষা ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছেন যে এর উৎস ছিল গিনির মেলিয়ান্দো গ্রামের দু'বছর বয়সের একটি শিশু। বিজ্ঞানীরা বলেন, খুব সম্ভবত বাদুড়ের ঝাঁক বাস করে এমন একটি গাছের কোটরে ঢুকে খেলতে গিয়েই সে সংক্রমিত হয়েছিল। ঐতিহাসিক পেশেন্ট জিরো - টাইফয়েড মেরি। আমেরিকার নিউ ইয়র্ক শহরে ১৯০৬ সালের টাইফয়েড জ্বরের প্রকোপের পেশেন্ট জিরো ছিলেন মেরি ম্যালন নামে এক মহিলা। আয়ারল্যান্ড থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হওয়া মেরি বিভিন্ন বড়লোকের বাড়িতে রাঁধুনী হিসেবে কাজ করতেন। টাইফয়েড মেরিকে নিয়ে আঁকা ১৯০৯ সালের এক কার্টুন যে বাড়িতেই মেরি কাজ করেছেন সে বাড়ির লোকেরাই টাইফয়েডে আক্রান্ত হচ্ছিল। কিন্তু মেরি ছিলেন এমন একজন 'সুস্থ' জীবাণু বাহক - যার নিজের দেহে কোন রোগের লক্ষণ দেখা যায়নি, কিন্তু তার সংস্পর্শে আসা অন্তত ১০০ লোককে তিনি সংক্রমিত করছিলেন। তাই মেরিকে বলা যায় প্রথম 'সুপার স্প্রেডার'দের একজন। নিউ ইয়র্কের সেই টাইফয়েড মহামারীতে আক্রান্ত প্রতি ১০ জনের একজন মারা গিয়েছিলেন। সব বিজ্ঞানী অবশ্য এমন লোকদের চিহ্নিত করতে চান না মাত্র একজন লোক যদিও বা একটা মহামারীর জন্ম দিতে পারে - কিন্তু তাকে চিহ্নিত করার পক্ষে নন অনেক বিজ্ঞানীই। কারণ তাতে ওই রোগ নিয়ে মিথ্যে তথ্য ছড়াতে পারে এবং সেই লোকটিও ভিকটিমে পরিণত হতে পারে। মহামারীর উৎস একজন ব্যক্তিকে চিহ্নিত করাটা অনেক বিজ্ঞানী সমর্থন করেন না এর সবচেয়ে বিখ্যাত উদাহরণ হলেন কানাডিয়ান গেটান ডুগাস - যাকে ভুলবশতঃ এইডস মহামারীর উৎস বা 'পেশেন্ট জিরো' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তিনি ছিলেন সমকামী এবং বিমানের ফ্লাইট এ্যাটেনডেন্ট হিসেবে কাজ করতেন। ১৯৮০র দশকে তাকে আমেরিকায় এইচআইভি ছড়ানোর জন্য দায়ী করা হয়। কিন্তু সেটা ছিল ভুল। তিন দশক পরে - ২০১৬ সালের এক জরিপে - বিজ্ঞানীর বলেন, মি. ডুগাস এইডসের পেশেন্ট জিরো হতে পারেন না, এবং এই ভাইরাস আসলে ১৯৭০এর দশকের শুরুতে ক্যারিবিয়ান অঞ্চল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছিল। তবে 'পেশেন্ট জিরো' কথাটার জন্ম হয়েছিল ১৯৮০র দশকে যুক্তরাষ্ট্রে এইচআইভি রোগের বিস্তার নিয়ে গবেষণার সময়ই। যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি নামের গবেষণাকেন্দ্রের গবেষকরা ক্যালিফোর্নিয়ার বাইরে থেকে আসা কোন এক রোগীকে বোঝাতে আউটসাইড শব্দটির প্রথম অক্ষর 'ও' ব্যবহার করেছিলেন। অন্য গবেষকরা ভেবেছিলেন এই 'ও' অক্ষর দিয়ে শূন্য বা জিরো বোঝানো হয়েছে - কারণ ইংরেজিতে জিরোকে অনেক সময় 'ও' বলা হয়। এভাবেই পেশেন্ট 'ও' কথাটা পরিণত হয় পেশেন্ট জিরো-তে । আরো পড়তে পারেন: মাস্ক পরে কি ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানো যায়? নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? নতুন করোনাভাইরাস বা কোভিড নাইনটিন আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তিটি কে? +text: নিস শহরে ছুরি নিয়ে চালানো হামলায় নিহত একজনের আত্মীয় গির্জার সামনে আহাজারি করছেন। নিস শহরের মেয়র ক্রিশ্চিয়ান এসট্রসি বলেছেন ''নত্রে ডেম গির্জার মধ্যে এই সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে।'' একজন নিহত ব্যক্তি যিনি গির্জায় প্রার্থনা করতে এসেছিলেন তার ''প্রায় শিরশ্ছেদ'' করা হয়েছে। হামলার পরপরই সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে গুলি করা হয়েছে এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মি. এসট্রসি এটাকে ''ইসলামী- ফ্যাসিবাদ'' বলেছেন এবং বলেছেন সন্দেহভাজন ব্যক্তি " বারবার আল্লাহু আকবর" ধ্বনি দিচ্ছিল। এমানুয়েল ম্যাক্রঁ ঘটনাস্থলে গেছেন। ফ্রান্সের জাতীয় সন্ত্রাস দমন বিষয়ক কৌঁসুলি খুনের তদন্ত শুরু করেছেন। মি. এসট্রসি এই হত্যাকাণ্ডকে শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটির সাম্প্রতিক হত্যার সাথে তুলনা করেছেন। এ মাসে গোড়ার দিকে প্যারিসের উপকণ্ঠে একটি স্কুলের ক্লাসরুমে ইসলামের নবীর কার্টুন দেখানোর সূত্রে ঐ স্কুল শিক্ষককে স্কুলের কাছে শিরশ্ছেদ করা হয়। তবে নিস শহরের হামলার ঘটনার উদ্দেশ্য সম্পর্কে পুলিশ এখনও পর্যন্ত কিছু বলেনি। তবে ইসলামের নবীর কার্টুন প্রকাশের পক্ষ সমর্থন করে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁর সাম্প্রতিক মন্তব্যে মুসলিম বিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে এবং কয়েকদিন ধরেই কিছু দেশে বিক্ষোভ হয়েছে। কোন কোন দেশে ফরাসি পণ্য বর্জনেরও ডাক দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে আজ বৃহস্পতিবার আরও দুটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। একটি ফ্রান্সে এবং অন্যটি সৌদি আরবে। ফ্রান্সে আভিন্ন্যুয়ার কাছে মঁফাভেত শহরে পুলিশকে হ্যান্ডগান নিয়ে হুমকি দেয়ার পর এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আর জেদ্দাতে ফরাসি দূতাবাসের বাইরে একজন রক্ষীর ওপর হামলা চালানো হয়েছে। সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ঐ রক্ষীকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। আরও পড়তে পারেন: গির্জায় হামলার কয়েক মিনিট পর সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করা হয় নিস শহরের ঘটনা সম্পর্কে কি জানা যাচ্ছে? নিহত তিনজনের মধ্যে দুজন গির্জার ভেতর মারা গেছে। একজন বৃদ্ধা নারী এবং একজন পুরুষ। খবরে বলা হচ্ছে ওই পুরুষকে গলা কাটা অবস্থায় পাওয়া গেছে। আরেকজন নারী ছুরিকাহত অবস্থায় কাছের একটি কফির দোকানে পালিয়ে যেতে পেরেছিলেন। তিনি পরে মারা গেছেন। পরে খবরে জানা গেছে, একজন প্রত্যক্ষদর্শী শহরে যে বিশেষ সুরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে তার মাধ্যমে সতর্কসঙ্কেত দিতে সমর্থ হন। গির্জার কাছে থাকেন শ্লো নামে এক বাসিন্দা বিবিসিকে বলেছেন: "আমরা রাস্তায় অনেক লোকের চেঁচামেচি শুনতে পাই। জানলা দিয়ে দেখি প্রচুর, প্রচুর সংখ্যায় পুলিশ আসছে। বন্দুকের গুলির আওয়াজ শুনতে পাই। অনেক গুলির আওয়াজ।" পুলিশ বলছে স্থানীয় সময় সকাল নয়টার কিছু পর হামলার ঘটনা ঘটে সাংবাদিকতার ছাত্র টম ভ্যানিয়ার হামলার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তিনি বিবিসিকে বলেন রাস্তায় লোকজন কান্নাকাটি করছিল। চার বছর আগে নিস শহরে একটি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছিল। এক ব্যক্তি সমুদ্র সৈকতে জনতার ভিড়ের ওপর দিয়ে ট্রাক চালিয়ে দিয়েছিল। ওই ঘটনায় মারা গিয়েছিল ৮৬ জন মানুষ। কী ধরনের প্রতিক্রিয়া হয়েছে? ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ফ্রান্সের সৈকত শহর নিস-এর কেন্দ্রীয় এলাকায় মানুষজনকে না যাবার পরামর্শ দিয়েছেন। জেরাল্ড দারমানিন বলেছেন প্যারিসে মন্ত্রণালয়ের একটি জরুরি বৈঠক তিনি ডাকছেন। আরও দেখতে পারেন: ফ্রান্সের বিরুদ্ধে এরদোয়ান, ইমরান খানসহ মুসলিম দেশগুলোর ক্ষোভের কারণ কী? প্যারিসের জাতীয় পরিষদের অধিবেশনের মাঝখানে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়েছে। ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এসময় কোভিড-১৯এর যে লকডাউন আজ রাত থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে সে বিষয়ে বিস্তারিত ঘোষণা দিচ্ছিলেন। "দেশের সামনে এটা খুবই গুরুতর মাপের নতুন একটা চ্যালেঞ্জ সে বিষয়ে সন্দেহ নেই," তিনি বলেন। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। মুসলিম সংগঠন, ফ্রেঞ্চ কাউন্সিল অফ দ্য মুসলিম ফেইথ নিস শহরে ছুরি নিয়ে চালানো হামলার নিন্দা করেছে। এবং হতাহত ও তাদের পরিবারের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেছে। ফ্রান্সের নিস শহরে একটি গির্জায় ছুরি নিয়ে চালানো হামলায় তিন ব্যক্তি মারা গেছেন। +text: একটি ফাঁকা ভোটকেন্দ্র। ছবিটি ব্রাহ্মনবাড়িয়া থেকে তোলা। অনেকগুলো কেন্দ্রে পর্যবেক্ষকের কোন উপস্থিতিও দেখা যায়নি। আবার কিছু কেন্দ্রে পর্যবেক্ষকরা ছিলেন খোশ গল্পে। তবে কমবেশি তারা সবাই জানিয়েছেন ভোটকেন্দ্রগুলোতে তেমন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও আতংকের কারণে ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম। এবারের নির্বাচনে ঢাকার যে কয়টি এলাকায় প্রার্থীরা বেশি তৎপর তার একটি লালবাগ। এখানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপক্ষে দলেরই একজন স্থানীয় প্রভাবশালী একজন নেতা। ওই নির্বাচনী এলাকায় আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্র। বেলা তখন প্রায় সাড়ে এগারটা। কেন্দ্রের বাইরে তখন অনেক লোক। তবে কেন্দ্রর ভেতরে ভোটার দেখা গেলো না তেমন। সেখানেই কথা হল কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের কয়েকজন পর্যবেক্ষকের সাথে। এদের একজন মনিরুল ইসলাম। নির্বাচন সম্পর্কে তাদের পর্যবেক্ষণ কি জানতে চাইলে মিস্টার ইসলাম বলেন “শুরু থেকেই আছি। এখন এগারটা বাজে। সব দল থাকলে যে আমেজ থাকতো সেটি নেই”। কেন্দ্রের পরিবেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন “কেন্দ্রের পরিবেশ ভালো। যেটা থাকার দরকার সেটা আছে। যেটুকু অসঙ্গতি ছিল সেটি প্রিজাইডিং অফিসার ঠিক করেছেন।" আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে গেলাম চকবাজার শিশু হাসপাতাল ভোট কেন্দ্রে। সেখানে অনেক খুঁজেও কোন পর্যবেক্ষকের দেখা মেলেনি। পরে বের হওয়ার সময় বাইরে দেখা গেল দুই যুবক পর্যবেক্ষক পরিচয়পত্র নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করছিলেন। এদের একজন ফয়সাল আহমেদ। তিনি জানালেন তিনি সকাল থেকে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হয়ে পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি বলেন, “এখানে সকাল থেকে আছি। সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন হচ্ছে। তবে ভোটার উপস্থিতি কম। কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।" এরপর আরও কিছু কেন্দ্র ঘুরে গেলাম মিরপুর এলাকায়। সেখানেও আওয়ামী লীগ প্রার্থী লড়ছেন দলের আরেকজন নেতার বিরুদ্ধে। ওই এলাকার ইসলামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ডেমোক্রেসিওয়াচের হয়ে নির্বাচ��� পর্যবেক্ষণ করছিল সংস্থাটির একটি দল। দলটির একজন সদস্য উত্তম কুমার সাহা। তিনি বলছিলেন আতঙ্কের কারণেই ভোটার উপস্থিতি কম বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, “আশপাশের অবস্থা কেমন, সহিংসতা হচেছ কি-না, ভোটার আসছে কি-না সেগুলো দেখছি।" কেন্দ্রের বাইরের পরিবেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সবাই জানেন মানুষের মনে ভয় কাজ করছে। এসব কারণেই ভোটার সংখ্যা কম। তবে সকালের চেয়ে ভোটার সংখ্যা এখন বাড়ছে”। তবে বাংলাদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য সুপরিচিত সংগঠনগুলোর অনেকগুলোর কোন প্রতিনিধি অনেক ভোটকেন্দ্রেই দেখা যায়নি। যদিও ফেমা ও জানিপপ আগেই জানিয়েছিল যে তারা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে এবার তারা সীমিত আকারে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে। এছাড়া মানবাধিকার সমন্বয় পরিষদের পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি কিছু ভোট কেন্দ্রে চোখে পড়েছে। তবে এসব পর্যবেক্ষকের অনেকেই বলেছেন তাদের প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে কেন্দ্রগুলোতে দায়িত্বরত পর্যবেক্ষকদের নির্বাচন বা ভোটগ্রহণের বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা না বলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের বিতর্কিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিদেশী পর্যবেক্ষকরা পর্যবেক্ষণ করছেন না। ঢাকায় নির্বাচনী কেন্দ্রগুলোতে দেশীয় পর্যবেক্ষকের সংখ্যাও ছিল খুবই কম। +text: সিটি এয়ারপোর্ট থেকে সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। সিটি এয়ারপোর্টের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, সারাদিনই এটি বন্ধ থাকবে। সেখান থেকে সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে প্রায় ১৬ হাজার যাত্রী সমস্যায় পড়বেন। রোববার সিটি এয়ারপোর্টের কাছে টেমস নদীর ধারে একটি পূর্ব নির্ধারিত কাজ চলার সময় বোমাটি খুঁজে পাওয়া যায়। এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফেলা বোমা বলে মনে করা হচ্ছে। ঐ জায়গার আশে-পাশের এলাকা থেকে সব পরিবারকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বোমা নিস্ক্রিয়করণ বিশেষজ্ঞ দলের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। রোববার রাত দশটা থেকেই সিটি এয়ারপোর্ট বন্ধ করে দেয়া হয়। লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, তারা রয়্যাল নেভির সঙ্গে মিলে এই বোমাটি সরাতে কাজ করছে। বিমানবন্দরের একটি সংস্কার কাজ চলার সময় বোমাটি খুঁজে পাওয়া যায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে বোমাটি খুঁজে পাওয়া গেছে সেটি জার্মান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এটি ফেলা হয়েছিল। সিটি এয়ারপোর্টের প্রধা��� নির্বাহী কর্মকর্তা রবার্ট সিনক্লেয়ার যাত্রীদের অসুবিধার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি জানান, বোমাটি উদ্ধার এবং নিস্ক্রিয় করতে তারা পুলিশ এবং নৌবাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা করছেন। টেমস নদী থেকে বোমাটি তোলার চেষ্টা চলছে। লন্ডনের সিটি এয়ারপোর্ট থেকে মূলত ইউরোপের বিভিন্ন গন্তব্যের ফ্লাইট যায়। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, ফ্লাইবি, সিটিজেট, কেএলএম এবং লুফথানসা এখান থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করে। ঘটনাস্থলের আশে-পাশের অনেক রাস্তাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। লন্ডনের সিটি এয়ারপোর্ট একেবারে টেমস নদীর ধারেই। লন্ডনে টেমস নদীতে পাঁচশো কেজি ওজনের একটি বোমা খুঁজে পাওয়ার পর নিকটবর্তী সিটি এয়ারপোর্ট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। +text: অর্থ চুরির কেলেঙ্কারি মাথায় নিয়ে সম্প্রতি পদত্যাগ করতে হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমানকে। চীনা মধ্যসত্ত্বভোগীদের সহায়তায় উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিপুল অংকের অর্থ লোপাট করে বলে এফবিআইর তদন্ত কর্মকর্তারা জানতে পেরেছেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলছে, এ ঘটনায় উত্তর কোরিয়াকে দায়ি করে মামলা দায়েরেরও প্রস্তুতি নিচ্ছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের খবরের উদ্ধৃতি দিয়ে বিভিন্ন বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়, মার্কিন তদন্ত কর্মকর্তারা মনে করছেন, উত্তর কোরিয়ার সরকারের নির্দেশনায় নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের বাংলাদেশ অ্যাকাউন্ট থেকে আট কোটি দশ লাখ ডলার চুরি করা হয়। এই হ্যাকাররা গতবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক ব্যাংক কোড ব্যবহার করে সুইফট সিস্টেমে প্রবেশ করে এবং নিউইয়র্কের ফেডারেল ব্যাাংকের বাংলাদেশ অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ ট্রান্সফার করে ফিলিপিন্সে সরিয়ে নেয়। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার ডেপুটি ডিরেক্টর রিচার্ড লেজেট বলেছেন, উত্তর কোরিয়াই হয়তো এ ঘটনায় জড়িত। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও এর আগে সেদিকেই ইঙ্গিত করেছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন। আরও পড়ুন:হঠাৎ করে শেখ হাসিনা কেন 'র'-এর সমালোচনায় মুখর লন্ডনে হামলা সম্ভবত ইসলামপন্থীদের কাজ: পুলিশ তওবা টিভিতে ইসলামী অনুষ্ঠানের সময় পর্ন প্রচার প্রাথমিকভাবে হ্যাকাররা ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করলেও পরে দুই কোটি ডলার উদ্ধার করা সম্ভব হয়। ফিলিপিন্সের সিনেট কমিটি এই চুরির ঘটনার তদন্ত শুরুর পর একটি ক্যাসিনোর মালিকের কাছ থেকে দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করা পর তা ফেরত পায় বাংলাদেশ। গবেষকরা এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক খাতে একাধিক সাইবার হামলা এবং ২০১৪ সালে সনি পিকচার্সের হলিউড স্টুডিও হ্যাকের ঘটনার সাথে মিল রয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। আধুনিক বিশ্বে সবচেয়ে বড় ব্যাংক চুরির ঘটনাগুলোর অন্যতম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির ঘটনায় উত্তর কোরিয়া জড়িত বলে দাবি করছে মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। +text: প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চান রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন করতে এবারের এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে রাশিয়ার বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনে রুশ সম্পৃক্ততায় তারা জড়িত ছিলেন। এর ফলে রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যে প্রতিশ্রুতি ছিল, সেই আশাবাদও এখন হুমকির মুখে পড়েছে। তবে, এই বিলটিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে মি. ট্রাম্প ভেটো দেবেন কিনা সেই সিদ্ধান্ত এখনো তিনি নেননি বলে জানাচ্ছে হোয়াইট হাউস। স্যাংশান বিল বা নিষেধাজ্ঞা বিল বলে ডাকা এই বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন মোট ৪১৯ জন সদস্য। রাশিয়ার পাশাপাশি ইরান ও উত্তর কোরিয়ার উপরেও নিষেধাজ্ঞা দিতে ভোট দিয়েছেন হাউজ অফ রেপ্রেজেন্টেটিভের সদস্যরা। এই বিলটি সিনেটে পাশ হয়ে গেলে মি. ট্রাম্পের জন্য তা যথেষ্ট মাথাব্যথার কারণ হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। কারণ বিলটিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে মি. ট্রাম্প ভেটো দেবার ক্ষমতা রাখেন। কিন্তু তিনি যদি ভেটো দেন, তাহলে, 'রাশিয়ার অতি সমর্থক' হিসেবে তার বিরুদ্ধে মার্কিন জনতার যে সন্দেহ ও অভিযোগ রয়েছে সেটি আরো ঘনীভূত হবে। রাশিয়া ইরান ও উত্তর কোরিয়ার ওপর আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য ভোট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ অফ রেপ্রেজেন্টেটিভ। +text: গত অগাষ্ট মাস থেকে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। বিশ্লেষকদের অনেকেই বলেছেন, রোহিঙ্গারা যাতে মিয়ানমারে ফিরে যাবার চিন্তা না করে সেজন্য তাদের মনে ভীতি ছড়ানোর মহড়া দিয়েছে সে দেশের বাহিনী। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হলে সীমান্তের জিরো লাইনে অবস্থানরত রোহিঙ্���াদের প্রথমে ফিরিয়ে নেবার বিষয়টি বলেছিল বাংলাদেশ। যেহেতু যেসব রোহিঙ্গা এখনো বাংলাদেশের ভেতরে ঢোকেনি সেজন্য তাদের পরিচয় যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজন নেই। সেজন্যই তাদের প্রথমে ফিরিয়ে নেবার বিষয়টি তুলে ধরেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেখান থেকে রোহিঙ্গাদের সরে যাবার নির্দেশনা দিয়ে মিয়ানমার বুঝিয়ে দিল প্রত্যাবাসনের বিষয়ে তারা কতটা অনাগ্রহী। এমটাই মনে করছেন বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব পিস এন্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) এ এন এম মুনিরুজ্জামান। মি: মুনিরুজ্জামান বলেন, "মিয়ানমারের এ ধরনের পদক্ষেপ অসহযোগিতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। রোহিঙ্গারা এমনিতেই মিয়ানমারে ফিরে যাবার ব্যাপারে ভীত। তার উপর এ ধরনের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি তাদের মনে আরো ভয় তৈরি করবে।" গত অগাস্ট মাসে রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর বাংলাদেশ নানা কূটনৈতিক তৎপরতা নিয়েছিল। যার ধারাবাহিকতায় রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবার বিষয়ে মিয়ানমারের সাথে একটি দ্বিপক্ষীয় প্রত্যাবাসন সমঝোতা করে বাংলাদেশ। গত নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরের পর সে চুক্তি হয়। চীনের আগ্রহ এবং কূটনীতিক মধ্যস্থতায় সে সমঝোতা হয়েছিল বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। কারণ চীন বরাবরই চেয়েছিল রোহিঙ্গা সংকট আন্তর্জাতিকীকরণ না করে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার দ্বিপক্ষীয়-ভাবে সেটি সমাধান করুক। সেজন্য বাংলাদেশও সে পথেই হেঁটেছে। সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন মনে করেন, সীমান্তের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি আবারো জানান দিল যে দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে সমাধানের চেষ্টা মোটেও সফল হচ্ছে না। তাহলে বাংলাদেশের সামনে আর বিকল্প আছে কী? তৌহিদ হোসেন বলেন, " এক পক্ষের আগ্রহে কখনো দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে সমাধান হবে না। আমাদের চেষ্টা করতে বহুপক্ষীয়ভাবে চেষ্টা করা। বাংলাদেশ তো দ্বিপক্ষীয়-ভাবে মিয়ানমারের উপর কোন চাপ তৈরি করতে পারবে না।" সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের উপর নানা ধরনের চাপ তৈরির চেষ্টা করছে আমেরিকা, ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের জাতিগত-ভাবে নিধন করার প্রমাণ মিলছে বলে মনে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন। কিন্তু মিয়ানমারের পাশে দাঁড়িয়েছে বড় শক্তি চীন, রাশিয��া এবং আঞ্চলিক শক্তি ভারত। আন্তর্জাতিকভাবে নানা বিবৃতি এবং সমালোচনা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের উপর কোন প্রভাব ফেলতে পারছে না বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক এম শাহিদুজ্জামান মনে করেন, শুধু সমালোচনা কিংবা বিবৃতি দিয়ে মিয়ানমারের উপর কোন চাপ তৈরি করতে পারবে না। ১৯৯০'র দশকে বলকান যুদ্ধের সময় বসনিয়ার মুসলমানদের জাতিগত নিধনযজ্ঞে মেতে উঠেছিল সার্বিয়ার বাহিনী। প্রায় তিন বছর পর আমেরিকার নেতৃত্বে ন্যাটো সার্বিয়ার বাহিনীর উপর সামরিক হস্তক্ষেপ করেছিল। অধ্যাপক শাহিদুজ্জামান মনে করেন, পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ের দিকে যাচ্ছে, যখন মিয়ানমারের উপর সামরিক হস্তক্ষেপই হতে পারে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান। অধ্যাপক শাহিদুজ্জামান মনে করেন, " যদি সামান্য পরিমাণও সামরিক হস্তক্ষেপ করা যায় তাহলে এর মাধ্যমে মিয়ানমার বাহিনীকে বাধ্য করা যাবে।" রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর থেকে মিয়ানমারের দিক থেকে সীমান্তে সামরিক উস্কানি ছিল বলে বাংলাদেশ অভিযোগ করেছে। মিয়ানমারের হেলিকপ্টার বেশ কয়েকবার বাংলাদেশের আকাশ সীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে বাংলাদেশ। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছেন, সীমান্তে সংঘাত তৈরির জন্য উস্কানি দিয়েছিল মিয়ানমার কিন্তু বাংলাদেশ সংযম দেখিয়েছে। মেজর জেনারেল (অব.) এ এন এম মুনিরুজ্জামান মেজর জেনারেল (অব.) এ এন এম মুনিরুজ্জামান মনে করেন সীমান্তে বাংলাদেশ যদি কোন পাল্টা জবাব দিতে চায় তাহলে পুরো প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার আশা ভেস্তে যেতে পারে। মি: মুনিরুজ্জামান বলেন, " মিয়ানমারের ফাঁদে পা দেয়া বাংলাদেশের উচিত হবে না। সীমান্তে সংঘাতময় পরিস্থিতির তৈরি হলে সেটি কোন সময় বাংলাদেশের স্বার্থে যাবে না।" মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী কতটা কঠোর অবস্থান নিয়েছে সেটি তাদের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করলেই বোঝা যায়। বিবিসি'র বার্মিজ ভাষা বিভাগ বলছে 'নো ম্যানস ল্যান্ড' বা 'জিরো লাইন' শব্দগুলো যাতে ব্যবহার না করা হয় সেজন্য মিয়ানমারের গণমাধ্যমকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিবিসির বার্মিজ ভাষা বিভাগের বো মও ব্যাখ্যা করছিলেন, সীমান্তে শক্তি বৃদ্ধির পেছনে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার যুক্তি তুলে ধরছে মিয়ানমার। বো মও বলেন, " বার্মার কর্তৃপক্ষ মনে করে সীমান্তে আরসার (আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি) সদস্যরা অবস্থান নিয়েছে। " মিয়ানমার যে ধরনের আচরণ দেখাচ্ছে তাতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশের ভেতরে অনেকে সংশয় প্রকাশ করলেও মিয়ানমারের ভেতরে এনিয়ে চিন্তা-ভাবনা কী? রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবার বিষয়ে মিয়ানমার কি সত্যিই আগ্রহী? ভারতের সাংবাদিক সুবীর ভৌমিক নিয়মিত মিয়ানমারে আসা-যাওয়া করেন। সেখানকার সরকার এবং সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ে মি: ভৌমিক কথা বলেন। তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের ভেতরে কী ধরনের চিন্তা কাজ করছে? মি: ভৌমিক বলেন, "সেনাবাহিনীর একটি অংশ এ প্রত্যাবাসন ঘটুক সেটা চায় না। মিয়ানমার আর্মির মধ্যে একটি ভেস্টেড ইন্টারেস্ট আছে যারা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া আটকাতে চায়।" রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কূটনৈতিক সফলতার দাবী করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলি বাংলাদেশের সাবেক কূটনীতিকরা মনে করেন, ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে যখন প্রায় ৮৬ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল তখন বাংলাদেশের উচিত ছিল বিষয়টি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জোরালো-ভাবে তুলে ধরা। মিয়ানমারের প্রতিবেশী চীন চেয়েছে রোহিঙ্গা ইস্যুটি দ্বিপক্ষীয়-ভাবে সমাধান হোক। চীন বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবে পরিচিত। কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার যাতে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকে চীন দ্বৈত নীতি নিয়েছে বলে ধারণা করেন অধ্যাপক এম শাহিদুজ্জামান। অধ্যাপক শাহিদুজ্জামান বলেন, " চীনের পররাষ্ট্রনীতির ইতিহাসে এ ধরনের আচরণ নতুন কিছু নয়। মানবাধিকারের প্রশ্নটি চীনের কাছে গুরুত্ব পায় না।.." বিশ্লেষকদের অনেকেই বলছেন, রোহিঙ্গা সংকটের ছয়মাস পার হলেও এ সংকট সমাধানের কোন লক্ষণ আপাতত দেখা যাচ্ছে না। এ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের ঘাড়েই চেপে গেল কিনা সেটি নিয়েও অনেকে আশংকা প্রকাশ করেন। আরো পড়ুন: 'মিয়ানমার সেনাবাহিনীর একটি অংশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আটকাতে চায়' মুসলিমদের ওপর বৌদ্ধদের সহিংসতা ঠেকাতে হিমশিম শ্রীলঙ্কা 'একবারই কমেন্ট করেছিলাম একটি বাংলা পত্রিকার নিউজে. তারপরে গালাগালির বন্যা!' বাংলাদেশ-মিয়ানমার সামরিক শক্তির পার্থক্য কতটা? সম্প্রতি বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে মিয়ানমারের দিক থেকে সামরিক শক্তি বৃদ্ধির পর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে অনেকে সংশয় প্রকাশ করেছে। +text: 'ফিলিস্তিনি' শব্দটি মেনু থেকে বাদ দিয়ে তোপের মুখে পড়েছে ভার্জিন এই এয়ারলাইন্সের খাবারের মেনুতে কুসকুস স্টাইলের একটি সালাদকে বর্ণনা করা হয়েছিল 'ফিলিস্তিনি স্বাদ-গন্ধে অনুপ্রাণিত' একটি খাবার হিসেবে। কিন্তু ইসরায়েলি সমর্থকদের আপত্তির মুখে ভার্জিন আটলান্টিক ফিলিস্তিনি শব্দটি এই মেনু থেকে তুলে নেয়। ইসরায়েল সমর্থকরা সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বলে প্রচারণা শুরু করেছিল যে ভার্জিন আটলান্টিক ফিলিস্তিনি সমর্থকদের খুশি করার চেষ্টা করছে। এজন্যে তারা এমনকি ভার্জিন আটলান্টিকের ফ্লাইট বর্জনেরও ডাক দেয়। এদের চাপের মুখে ভার্জিন আটলান্টিক 'ফিলিস্তিনি' শব্দটি মেনু থেকে তুলে নেয়। কিন্তু এটি করার পর ভার্জিন আটলান্টিক এখন আরও তীব্র বিতর্কের মুখে পড়েছে। ফিলিস্তিনের সমর্থকরা তীব্র ভাষায় সমালোচনার করছে এই এয়ারলাইন্সের। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে টুইটারে এক ইসরায়েল সমর্থক প্রথম এই মেনুর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে মেনুটির ছবি পোস্ট করে। এতে অভিযোগ করা হয় ভার্জিন আটলান্টিক ফিলিস্তিনিপন্থী গোষ্ঠী 'বয়কট-ডাইভেস্টমেন্ট এন্ড স্যাংশন (বিডিএস) দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মেনুতে ফিলিস্তিন শব্দটি ব্যবহার করেছে। ডেভিড গারনেলাস নামের আরেকজনও একই রকম অভিযোগ করে ভার্জিন আটলান্টিক বয়কটের জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানায়। এরপর ভার্জিন আটলান্টিক এ জন্যে ক্ষমা চেয়ে এই খাবারটির নাম বদলে দেয় এবং এটিকে কেবলমাত্র 'কুসকুস সালাদ' বলে বর্ণনা করে। কিন্তু এবার শুরু হয় পাল্টা প্রতিক্রিয়া। কেন ফিলিস্তিনি নামটি মুছে দেয়া হলো তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেন অনেকে। তারা প্রশ্ন তোলেন, কেন ভার্জিন আটলান্টিক মনে করছে ফিলিস্তিনি শব্দটি আপত্তিকর। টুইটারে আনা হাবিবটি নাম একজন মন্তব্য করেন, "ফিলিস্তিনি বিরোধী গোষ্ঠীগুলো ফিলিস্তিনকে কেবল মানচিত্র থেকে নয়, খাবারের মেনু থেকে পর্যন্ত মুছে ফেলতে চায়।" ফিলিস্তিন বলতে ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুসালেম এবং গাজার কথাই বুঝিয়ে থাকে ফিলিস্তিনি সমর্থকরা। কখনো কখনো তারা ইসরায়েলকেও এর অন্তর্ভুক্ত করে। তবে ইসরায়েল সমর্থকরা মনে করে এর মাধ্যমে তাদের রাষ্ট্রের বৈধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়। ভার্জিন আটলান্টিক বিবিসিকে বলেছে, তারা এই সালাদটিকে ফিলিস্তিনি বলেছিল, কারণ এর প্রধান উপকরণ মাফটুল সম্পর্কে বেশিরভাগ মানুষ খুব বেশি কিছু জানে না। মাফটুলকে মূলত ফিলিস্তিনি কুসকুস হিসেবে বর্ণনা করা হয় এবং এটি আসে রোদে শুকানো এক ধরণের গম থেকে। ভার্জিন আটলান্টিকের এক মুখপাত্র বলেন, "আমরা গ্রাহকদের নিশ্চিত করতে চাই যে আমরা একটি খাবারের নামকরণ করে বা নাম বদলে কাউকে আহত করতে চাইনি। আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল আমাদের যাত্রীদের জন্য ফ্লাইটে নতুন স্বাদের খাবার নিয়ে আাস। ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলিদের মধ্যে খাবারের নামকরণ নিয়ে এরকম উত্তেজনার কথা আগে শোনা যায়নি। ২০১৫ সালে ব্রিটেনের একটি সুপারমার্কেট 'টেস্ট অব ইসরায়েল' বলে একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করেছিল। এতে কিছু ঐতিহ্যবাহী আরব খাবারকে অন্তর্ভুক্ত করায় এ নিয়ে তখন বিতর্ক হয়েছিল। ভার্জিন আটলান্টিক তাদের একটি খাবারের মেনু থেকে ফিলিস্তিনি শব্দটি বাদ দেয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র বিতর্কের মুখে পড়েছে। +text: ল্যান্ডফোনের গ্রাহক বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশের সরকারি সংস্থা বিটিসিএল ''ছোটবেলায় পাশের বাসায় টেলিফোন ছিল, আত্মীয়স্বজন সেখানে ফোন করতো। সেটা ধরতে গেলে তারা বাঁকা ভাবে তাকাতেন, আমাদেরও খুব বিব্রত লাগতো। কিন্তু তখন টেলিফোনের সংযোগ নেয়া খুব খরচের ব্যাপার ছিল, তাই নেয়া হয়নি। তখন থেকেই ইচ্ছা ছিল বাসায় একদিন টেলিফোনের সংযোগ নেবো।'' ২০১৩ সালের দিকে ঢাকায় ফ্ল্যাট কেনার পরে তিনি ল্যান্ডফোনে সংযোগ নেন, যদিও পরিবারের সব সদস্যের নিজস্ব মোবাইল রয়েছে। খরচও হয় সামান্য। কিন্তু পরিবারের সদস্যদের কাছে সেই ফোনের এখন আর চাহিদা নেই। ইনস্যুরেন্সের কর্মকর্তা মি. আহমেদ বলছেন, ''আমার মোবাইল বিল অফিস থেকে দিয়ে থাকে, ফলে আমার আর ওই ফোনটা ব্যবহার করা হয় না। বাচ্চারা, আমার স্ত্রীরও মোবাইল আছে। আত্মীয়স্বজনও সবসময় মোবাইলে ফোন করেন। ফলে ওই ফোনটা আর ব্যবহারই করা হয়না, কিন্তু প্রতিমাসেই লাইন রেন্ট জমা হচ্ছে। '' এখন তিনি ফোনটা সারেন্ডার করে দেয়ার কথা ভাবছেন। মিরপুরের বাসিন্দা শাহনাজ পারভিন বলছেন, ''বাসায় ল্যান্ডলাইনের একটা ফোন আছে অনেকদিন ধরে। কেউ সেটা ব্যবহার করে না, কারণ মোবাইল থেকেই সহজে ফোন করা যায়। ল্যান্ডলাইনে ফোন করতে মোবাইল থেকে নাম্বার বের করে ডায়াল করা অনেক ঝামেলা। ফলে দিনে দিনে সেটা ওপর ধুলা জমেছে। একদিন আমি পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখি, সেটটা নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু প্রতিমাসেই লাইন রেন্ট দিতে হচ্ছে।'' কয়েকমাস আগে তিনি সংযোগটা পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছেন। আরো পড়ুন: কেমন চলছে ৯৯৯ নম্বরে জরুরী টেলিফোন সেবা? বাংলাদেশে ফোনালাপ ফাঁস করা কি অপরাধ? গত কয়েক বছর ধরে প্রতিবছর গ্রাহক হারাচ্ছে সরকারি প্রতিষ্ঠান বিটিসিএল কমছে গ্রাহক সংখ্যা পাবলিক সুইচড টেলিফোন নেটওয়ার্ক (পিএসটিএন), যা ল্যান্ডফোন বলে গ্রাহকদের মধ্যে বেশি পরিচিত, বাংলাদেশে প্রতিবছর গ্রাহক হারাচ্ছে। বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির অক্টোবর ২০১৫ সালের হিসাব অনুযায়ী, সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে পিএসটিএন বা ল্যান্ডফোন গ্রাহক রয়েছে প্রায় নয় লাখের মতো। অথচ একই সময়ে মোবাইল ফোনের গ্রাহক ছিল প্রায় সোয়া তের কোটি। এর মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান বিটিসিএলের গ্রাহক রয়েছে সাড়ে সাত লাখ। তবে গত চার বছরে সেটি আরো দুই লাখ কমে এখন দাঁড়িয়েছে সাড়ে পাঁচ লাখে। অর্থাৎ প্রতিবছর প্রায় ৫০ হাজার গ্রাহক হারাচ্ছে সংস্থাটি। এর বাইরে র‍্যাংকস টেলিকম ও বাংলা ফোনের অল্পকিছু গ্রাহক রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দাপ্তরিক চাহিদা ছাড়া আবাসিক খাতে এখন আর ল্যান্ডফোনের কোন চাহিদা নেই, ফলে এটির সংখ্যাও বাড়ছে না। ফলে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে মাসিক লাইন রেন্ট তুলে দিয়ে মাসে ১৫০ টাকায় ইচ্ছামতো কথা বলার সুযোগ চালু করতে যাচ্ছে কোম্পানিটি। প্রতিমাসে ভ্যাটসহ প্রায় ১৭৫ টাকা গ্রাহকদের দিতে হবে, বিনিময়ে তারা ইচ্ছামতো যেকোনো বিটিসিএল নম্বরে কথা বলতে পারবেন। ১৬ অগাস্ট থেকে এই সুবিধাটি চালু হবে। তবে মোবাইলে কথা বলতে হলে মিনিটে ৫২ পয়সা দিতে হবে। বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইকবাল মাহমুদ বিবিসি বাংলাকে বলছেন, যে গ্রাহকরা চলে গেছেন, আমরা তাদের আবার ফিরিয়ে আনতে চাইছি। বিশেষ করে বাসায় যারা থাকেন, তারা যেন আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ল্যান্ড ফোন ব্যবহারে আগ্রহী হন, আমরা সেই চেষ্টা করছি। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: কাশ্মীর: যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার মধ্যে কেমন আছে যেভাবে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে কাশ্মীরের তরুণরা হংকংয়ের অর্থনীতি চীনের জন্য এখনো কতটা গুরুত্বপূর্ণ? ডেঙ্গু: যে কারণে সরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা কম বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মোবাইল থেকে ল্যান্ডফোনে গ্রাহক ফেরানো হবে সবচেয়ে ���ড় চ্যালেঞ্জ কিন্তু ল্যান্ডফোনে গ্রাহক ফেরানো কতটা সম্ভব? ভয়েস কল সুবিধা দিয়ে গ্রাহকদের ধরে রাখতে বিটিসিএল চেষ্টা করলেও শুধুমাত্র ভয়েস কলের সুযোগ দিয়ে গ্রাহক ধরে রাখা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। টেলিকম ও আইটি খাতের বিশ্লেষক টি আই এম নূরুল কবির বলছেন, 'আমার মনে হয়, শুধু ভয়েসের প্রস্তাব দিয়ে জনগণকে কতটা আকৃষ্ট করা যাবে, এ নিয়ে সন্দেহ আছে। মোবাইল ফোনের বিকল্প হিসাবে শুধু সস্তায় কথা বলার জন্য একটি ফিক্সড ফোনের প্রয়োজনীয়তা মানুষ অনুভব করতে নাও পারে।'' তিনি বলছেন, বর্তমান বিশ্বে উন্নত দেশগুলোয় ফিক্সড ফোনের সঙ্গে মানুষ ইন্টারনেট, টিভি, স্ট্রিমিং ইত্যাদি সুবিধা দেয়া হয়, যা প্রচলিত মোবাইলের চেয়ে কম খরচে পাওয়া যায়। ফলে সেখানে এখনো এ ধরণের ফোনের চাহিদা আছে। নূরুল কবির বলছেন, সেসব সেবা যদি যুক্ত করা হয়, যা বিটিসিএলের সক্ষমতার ভেতরেই আছে, তাহলে অবশ্যই এটা গ্রাহকের কাছে একটি প্রয়োজনীয় সংযোগ মনে হতে পারে। ফাইবার অপটিক সংযোগের মাধ্যমে ঘরে ঘরে ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়ার একটি প্রকল্প বিটিসিএলের আছে। এই ল্যান্ড ফোন সংযোগে যদি সেটা যোগ করা যায়, এবং খরচ কম হয়,তাহলে অনেক গ্রাহক নতুন করে আকৃষ্ট হতে পারে বলে তিনি মনে করেন। ''শুধুমাত্র মাসিক লাইন রেন্ট বাতিল করে দিলে বা বিটিসিএলে ইচ্ছামতো কথা বলার সুযোগ দিলে গ্রাহক বাড়বে বা গ্রাহকরা নতুন করে নেবে, আমার সেটা মনে হয়না,'' বলছেন টি আই এম নূরুল কবির। বিটিসিএলের কর্মকর্তারা বলছেন, বিষয়টি তারাও উপলব্ধি করেছেন এবং গ্রাহকদের ফেরাতে কিছু প্রকল্পও নেয়া হয়েছে। বিটিসিএলের এমডি ইকবাল মাহমুদ বলছেন, ''এখনো ল্যান্ডলাইনে ইন্টারনেট সুবিধা দেয়ার একটি প্রকল্প আমাদের আছে। পাশাপাশি আমরা নতুন কিছু প্রকল্প নিয়েছে, যার মাধ্যমে সবগুলো এক্সচেঞ্জ ডিজিটাল করে ফেলা হচ্ছে। তখন গ্রাহকরা ঘরে বসে উন্নত দেশগুলোর মতো ল্যান্ডলাইন দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহারের পাশাপাশি স্ট্রিমিং ও অন্যান্য সেবাও পাবেন।'' তার মতে, মোবাইলের অভ্যস্ততা থেকে চট করে ব্যবহারকারী হয়তো ল্যান্ডলাইনে আগ্রহী হবে না, কিন্তু নানা সুবিধা দেখতে পেলে আস্তে আস্তে তাদের সংখ্যা বাড়বে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু সুবিধার ঘোষণাই নয়, সেটা বাজারে প্রচলিত অন্যান্য সেবার চেয়ে কম মূল্যে হলে হয়তো গ্রাহকরা আকৃষ্ট হতে পারে। সেই সঙ্গে গ্রাহক সেবার মানটিও নিশ্চিত করতে হবে। ধানমন্ডির বাসিন্দা আবুল মনসুর আহমেদ তাঁর বাসায় শখ করে একটি একটি ল্যান্ডলাইন সংযোগ নিয়েছিলেন। +text: রিটার্নিং অফিসার শুরুতেই তার মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ফেব্রুয়ারি মাসের আট তারিখ থেকে কারাবন্দী রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। তারপর থেকেই আশংকা তৈরি হয়েছিলো তিনি আদৌ এবার নির্বাচন করতে পারবেন কিনা। আরো পড়ুন: খালেদা জিয়ার অতীত নির্বাচনের ফলাফল কেমন ছিল? তিনটি আসনেই খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিল কোন ভরসায় নির্বাচন করতে চাইছেন খালেদা জিয়া? বাংলাদেশে উচ্চ আদালতের একটি রায় অনুযায়ী, "কোন প্রার্থী যদি 'নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে' দোষী সাব্যস্ত হয়ে দুই বছরের বেশি মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত হন - তাহলে তিনি নির্বাচনে অংশ নেবার যোগ্যতা হারাবেন।" অ্যটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলছেন এই একই কারণে আজ আদালতের তৃতীয় বেঞ্চও তার রিট খারিজ করে দেয়। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই প্রথমবারের মতো দলীয় প্রধানকে ছাড়াই নির্বাচনী প্রচারণাও শুরু করে দেয় বিএনপি। তবে, ফেনী-১ এবং বগুড়া ৬ ও ৭ আসনে তার পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া হয়েছিল। একই সাথে চলতে থাকে আইনি লড়াই। রিটার্নিং অফিসার শুরুতেই তার কারাদণ্ডের কারণে মনোনয়নপত্র বাতিল করে দিলে নির্বাচন কমিশনের কাছে আপীল করেছিলেন খালেদা জিয়া। সেখানে শুনানির পর তার আবেদন ৪-১ ভোটে বাতিল হয়ে গেলে তিনি উচ্চ আদালতে যান। সেখানে তিনটি আলাদা রিট করেছিলেন তিনি। ১৩ই ডিসেম্বর মঙ্গলবার খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন কি-না সে নিয়ে বিভক্ত রায় দেয় হাইকোর্ট বেঞ্চ। এই রিট আবেদনের শুনানির পর সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছেলেন তার আইনজীবীরা। এরপর তার রিট তৃতীয় আর একটি বেঞ্চে পাঠানো হলে সেটিও আজ খারিজ করে দিয়েছে আদালত। তবে এখনো উচ্চ আদালতের আপীল বিভাগে আপীল করার সুযোগ তার রয়েছে, বলছেন আইনজীবীরা। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম অবশ্য বলছেন, "আমি মনে করছি না যে আপীল বিভাগে গেলে সেখানে ভিন্ন কোন সিদ্ধান্ত পাবেন খালেদা জিয়া।" বাংলাদেশে ৩০শে ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার প্রার্থ���তা বাতিলের বিরুদ্ধে যে রিট আবেদন হয়েছিলো - আজ সেটি খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। +text: বিশ্বকাপ খেলতে ব্রিটেনে আসা বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা মঙ্গলবার ঈদ উদযাপন করেছেন আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯ খেলতে আসা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রায় সবাই যোগ দিয়েছেন ঈদের আনন্দে। লন্ডনের সেন্ট্রাল মসজিদে আজ ঈদের নামাজ আদায় করেছেন সবাই। খেলোয়াড়দের সাথে ছিলেন টিম ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন, নির্বাচক হাবিবুল বাশার ও মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমাম। ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হামলার ঘটনার পর বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ঈদ জামাতের সম্ভাব্য স্থান বলা হয়নি শুরুতে। তবে আলাদা কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি। বাংলাদেশ দলের প্রায় সবাই পাঞ্জাবি পরে নামাজ আদায় করেন। ঈদের দিনে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের গ্রুপ ছবি ঈদের আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা বলেন, আমাদের তো খেলাই ঈদ, ঈদে সবাই দোয়া করবেন। আপনারা ঈদ করেন ভালোভাবে। কেমন ছিলো ঈদের সকাল? লন্ডনে মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিরূপ আবহাওয়া। কনকনে ঠান্ডা বাতাস,আর সকাল থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিলো। সকালটা ছিলো বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জন্য মুক্ত। কেউ পরিবারকে সময় দিয়েছেন, কেউ বা ছবি তুলে উদযাপন করেছেন। নামাজের পর সাকিব আল হাসান স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে লন্ডনের রাস্তায় বের হন। কিন্তু ক্রাইস্টচার্চের সেই শুক্রবারের কথা কি বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মাথায় এসেছিলো? টিম ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন বিবিসি বাংলাকে জানান, এমন কিছুই হয়নি বা মাথায় আসেনি কারো। "সকাল থেকেই সবাই খুশি ছিল বেশ, আমরা নিজেরাই নামাজের ব্যবস্থা করি।" "আমরা নিজেরাই হাই কমিশনের সাপোর্ট নিয়ে নামাজ পড়েছি, ক্রিকেটারদের জন্য একেবারে আলাদা একটা জায়গা করে দেয়া হয়েছে," বলছিলেন খালেদ মাহমুদ সুজন। বাংলাদেশ দল যেখানে নামাজ পড়ে সেখানে আর কারো জায়গা দেয়া হয়নি, ভক্তরাও কাছে আসতে পারেননি বলে জানা গেছে। আরো পড়তে পারেন: বিশ্বকাপ নিয়ে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার ভাবনা কী? কেনিংটন ওভালে একদিন পরেই বাংলাদেশ মাঠে নামবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে, তার আগের মঙ্গলবারই ইংল্যান্ডে পালিত হচ্ছে ঈদ। +text: ছুটি শেষে কর্মস্থল অভিমুখে সাধারণ মানুষ। মানুষের এমন গাদাগাদি অবস্থায় যাতায়াতের ফলে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তবে যাত্রীরা বলছেন, দূরপাল্লার অন্যান্য পরিবহন বন্ধ থাকায় তারা বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন। দক্ষিণের জেলা থেকে আসা এক যাত্রী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, অন্যান্য ঈদে তারা আরও দীর্ঘ সময় ধরে ছুটি কাটান। কিন্তু এবার লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়তে পারে, এমন আভাস পেয়ে এক প্রকার তাড়াহুড়া করেই কর্মস্থলে ফিরছেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ১৬ই মে পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানো হয়েছিল। লকডাউনের এই সময়সীমা আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে ২৩শে মে পর্যন্ত বাড়বে বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। রোববার এ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার কথা রয়েছে। লকাডাউন চলাকালীন এই পরিস্থিতিতে দুরপাল্লার পরিবহনের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। ফেরি চলাচলের অনুমোদন দেয়া হয়েছিল, শুধুমাত্র জরুরি পণ্য পরিবহনের কাজে। কিন্তু ঈদের ছুটি কাটাতে সাধারণ মানুষকে সেই ফেরিতেই ভিড় করে যাতায়াত করতে দেখা গেছে। ঘাটগুলোয় লঞ্চ, স্পিডবোটসহ অন্যান্য যাতায়াত সেবা বন্ধ থাকায় দক্ষিণের জেলায় যাতায়াত করতে যাত্রীরা বাধ্য হয়ে ফেরি ব্যবহার করেছেন। এসময় অনেক যাত্রী নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করারও অভিযোগ করেন। ঈদের আগে ফেরিতে মানুষের উপচ পড়া ভিড়। এরপরও বেলা বাড়ার সাথে সাথে কাঠালবাড়ি-শিমুলিয়ায় এবং দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ঘাটে মানুষের ভিড় ক্রমশ বাড়তে থাকে। তবে ঈদের আগে যাত্রীদের যেমন ভিড় ছিল - ফেরার সময়ে ভিড় তেমন তীব্র না হলেও মানুষের যথেষ্ট চাপ ছিল ঘাটগুলোয়। তীব্র রোদের মধ্যে হাজারো মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কোন একটি ফেরি ঘাটে ভিড়তেই মানুষ সেটায় গাদাগাদি করে উঠে পড়েন। ফেরিতে যাতায়াত করা এসব যাত্রীদের কাউকেই তেমন স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। এ ব্যাপারে এক যাত্রী গণমাধ্যমকে জানান যে, গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়ার কারণেই মানুষ গাদাগাদি ভিড় করে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হচ্ছে। গণপরিবহনের সংখ্যা বাড়িয়ে দিলে মানুষের দুর্ভোগ কমতো এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনেই মানুষ চলাচল করতে পারতো। কাজে যোগ দিতে অনেকে যেমন শহরের দিকে আসছেন, আবার অনেকে প্রিয়জনের সান্নিধ্য পেতে শনিবারও পদ্মা পাড়ি দিয়ে শহর ছেড়ে বাড়ির দিকে ছুটছেন। বিশেষ করে যারা ভিড়ের কারণে বাড়ি যেতে পারেননি তারা অনেকেই ভেবেছিলেন ঈদের দ্বিতীয় দিন নির্ঝঞ্ঝাটে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু ফেরিঘাটে এতো মানুষের ভিড় দেখে এক যাত্রী বলেন, "আমি ভিড় ধাক্কাধাক্কি এড়াতে ঈদের আগে বাসায় যাই নাই। ভাবলাম যে ঈদের পরে যাবো। কিন্তু এতো মানুষ দেখে আমি হতবাক। এতো মানুষ চলে যাওয়ার পর আজও এতো মানুষ কোথা থেকে আসলো?" গণপরিবহন বন্ধ থাকায় গন্তব্যে পৌঁছাতে মানুষ দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে যান। ফেরি শুধুমাত্র যানবাহন পারাপারের জন্য হলেও এবারে দেখা গেছে যানবাহনের চাইতে মানুষই ফেরির অধিকাংশ জায়গা দখল করে আছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে মানুষের এতো ভিড় দেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উদ্বেগ জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি। মি. কাদের বলেন, "গাদাগাদি অবস্থায় চলাচলের কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। এমতাবস্থায় জন সমাগম এড়িয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ পরবর্তী চলাচলের ব্যাপারে সবোর্চ্চ সতর্কতা পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।" এদিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল এবং ঢাকা চট্টগ্রামসহ অন্যান্য সড়কে ও মহাসড়কে ঢাকার দিকে মানুষকে আসতে দেখা গেছে। প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ট্রাকে তাদের ঢাকা ফিরতে দেখা যায়। সড়কে দূরপাল্লার পরিবহন বন্ধ থাকায় বেশ দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: ঈদের ছুটি শেষে আগামীকাল রোববার থেকে খুলে যাচ্ছে অফিস কল কারখানা। এ কারণে কাজে যোগ দিতে ঈদের দ্বিতীয় দিনেই ঢাকা অভিমুখে যাত্রা করছেন সাধারণ মানুষ। +text: দ্বিতীয় ব্যক্তিকে এইডস ভাইরাসমুক্ত করার বিষয়টি বিশ্বের চিকিৎসা বিজ্ঞানে আশার আলো জাগিয়েছে। এটিকে প্রাণঘাতী এইডস ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে চিকিৎসাবিজ্ঞানের বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই রোগীর নাম, পরিচয়, বয়স বা জাতীয়তা, সবই গোপন রাখা হয়েছে। তবে যেহেতু যুক্তরাজ্যে তাঁকে এই চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সেকারণে তাঁকে শুধু 'লন্ডন রোগী' নামে ডাকা হচ্ছে। এরসাথে এটুকুই বলা হয়েছে এই রোগী পুরুষ। আরও পড়ুন: পাকিস্তান জুড়ে জঙ্গি-বিরোধী ব্যাপক ধরপাকড় এয়ার ইন্ডিয়ায় ক্রুদের 'জয় হিন্দ' বলতেই হবে হার্ট অ্যাটাক: যেসব স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অবহেলা নয় বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এইচআইভি সংক্রমণের বিরুদ্ধে এই পদ্ধতি পুরোপুরি বাস্তবসম্মত নয়। কিন্তু এর ধারাবাহিকতায় একদিন এই ভাইরাস থেকে পুরোপুরি নিরাময়ের জন্য বাস্তবসম্মত চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হবে বলে তারা বিশ্বাস করেন। এইচআইভি নিয়ে সচেতনতামূলক ব্যজ কিভাবে এইডস ভাইরাসমুক্ত করা সম্ভব হলো? 'লন্ডন রোগী' নামে ডাকা ব্যক্তির দেহ এইডস ভাইরাসমুক্ত করা হয়েছে স্টেম সেল বা অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে। আর এই অস্থিমজ্জা আরেকজন ব্যক্তির দেহ থেকে নেয়া হয়েছে। যিনি তার দেহ থেকে অস্থিমজ্জা দান করেছেন, তিনি ছিলেন এইচআইভি প্রতিরোধী একজন সুস্থ ব্যক্তি। যাতে এই সুস্থ ব্যক্তির দেহ থেকে নেয়া অস্থিমজ্জা এইচআইভি সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে। যুক্তরাজ্যের চিকিৎসকরা জিনগত রুপান্তরের মাধ্যমে লন্ডন রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করেছিলেন তিন বছর আগে। শেষপর্যন্ত চিকিৎসকরা তাকে ভাইরাসমুক্ত করতে পেরেছেন সফলভাবে। দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে তার দেহেএই ভাইরাস আর দেখা যায়নি। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন, ইমপেরিয়াল কলেজ, ক্যামব্রিজ এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এই চিকিৎসা ও গবেষণার সাথে যুক্ত ছিলেন। রক্ত পরীক্ষায় এইচআইভি সংক্রমণ ধরা পরে 'লন্ডন রোগী' কি পুরোপুরি সুস্থ হয়েছে? চিকিৎসকরা বলেছেন, এই রোগী এখন এইচআইভি'র পুরোনো চিকিৎসা নিচ্ছেন না। তার রোগ উপশম হয়েছে।তবে রোগী পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গেছেন, তা বলার সময় ওখনও আসেনি। এই রোগীর দেহে এইচআইভি সংক্রমণ ধরা পড়ে ২০০৩ সালে। ২০১২ সালে তার এক ধরণের ব্লাড ক্যান্সার শণাক্ত হয়। এরপর চার বছর ধরে স্বাভাবিক চিকিৎসা চালিয়ে ঐ রোগী ক্যান্সারে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা হিসেবে চিকিৎসকরা অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের পরিকল্পনা নেন। সে অনুযায়ী অস্থিমজ্জার দাতা খোঁজা হয় এবং শেষ পর্যন্ত দাতা পাওয়া গেলে প্রতিস্থাপন করা হয় তিন বছর আগে। এই রোগীর আগে প্রথম একজন রোগীকে এইডস ভাইরাসমুক্ত করা হয় ২০০৭ সালে জার্মানির বার্লিনে। তার দেহেও অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে একইভাবে ভাইরাসমুক্ত করা হয়েছে। প্রথম এইডস ভাইরাসমুক্ত করা রোগীকে 'বার্লিন রোগী' নামে ডাকা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সেই বার্লিন রোগী এখনও ভাইরাসমুক্ত আছেন। প্রথম সেই রোগীর চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে দ্বিতীয় ব্যক্তিকে ভাইরাসমুক্ত করা হলো। ভাইরাসমুক্ত রোগীকে এখন আর এইচআইভি নিয়ন্ত্রণের জন্য থেরাপী ঔষধ নিতে হচ্ছে না। এই চিকিৎসা কতটা সম্ভবনা তৈরি করছে? কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের রোগ সংক্রমণ বিভাগের ড. অ্যানড্রু ফ্রিডম্যান বলেছেন, "এই পদ্ধতিকে একটা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি বলা যায়। তবে বিশ্বে লক্ষ লক্ষ এইচআইভি আক্রান্ত বা এইডস রোগীর জন্য এই চিকিৎসা সুবিধাজনক হবে না। কারণ এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল, জটিল এবং ঝঁকিপূর্ণ। এটি একেবারে টেকসই ব্যবস্থা নয়।" তবে তিনি এতে আশার আলো দেখছেন। তিনি মনে করছেন, এখন এইডস এর বিরুদ্ধে সহজ চিকিৎসা পদ্ধতি বের করতে সুবিধা হবে। পৃথিবীতে এইডসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো একজন এইচআইভি আক্রান্ত রোগীকে এইডস ভাইরাসমুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। +text: ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সদ্য সমাপ্ত টি টোয়েন্টি সিরিজে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে জয় পায় বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল ভিডিওতে দেখা যায় সাকিব আল হাসানকে উদ্দেশ্য করে এক ব্যক্তি কিছু বলার পর, সাকিব ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান। শুরুতে অনেকেই বলছিলেন যে এই তর্ক নিরাপদ সড়ক আন্দোলন নিয়ে সাকিব আল হাসানের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে হয়। তবে সাকিব আল হাসান তাঁর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছেন ভিডিওটিতে যে বার্তা ছড়ানো হয়েছে তা ভুল। বিবৃতিতে সাকিব যা বলেছেন হুবহু তা তুলে ধরা হলো, "আমার প্রিয় ভক্ত এবং অনুসারীদের উদ্দেশ্য করে কিছু কথা বলতে চাই। সম্প্রতি আমাকে নিয়ে একটি ভিডিও আপলোড করা হয়েছে যেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের পর লবিতে আমাকে এবং আমার একজন তথাকথিত 'ফ্যান' এর সাথে তর্ক বিতর্ক করতে দেখা যায়। এই ক্লিপটি সম্পূর্ণ ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যা প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করে না।" "পর পর ম্যাচ থাকায় আমি এবং আমার সহকর্মী বেশ ক্লান্ত ছিলাম এবং আমরা আমাদের রুমে ফিরে যাচ্ছিলাম। আমরা আমাদের নিজস্ব সরঞ্জাম এবং ব্যাগ বহন করছিলাম তাই আমাদের হাত পূর্ণ ছিল যা কোনভাবেই অটোগ্রাফ দেয়া অবস্থায় ছিল না। আমরা সর্বদাই আমাদের ভক্তদের সাথে সময় কাটাতে পছন্দ করি এবং তাদের সাথে ছবি তুলে, অটোগ্রাফ দিয়ে মুহূর্তগুলি ভাগ করে নেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু ভক্তদেরও বুঝতে হবে যে আমরাও মানুষ।" ভক্তদের সমর্থনের প্রশংসা করে সাকিব আল হাসান তার বিবৃতিতে বলার চেষ্টা করেছেন যে, মাঠে ভালো খেলার চেষ্টার সাথে সাথে অনেক সময় খেলোয়াড়দের নিজেদের গুছিয়ে রাখা কষ্টের হয়। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, "আমাদের কি ব্যস্ত কিংবা ক্লান্ত অনুভব করার অনুমতি নেই?" সাকিব বলেন তিনি তাঁর ভক্তদের অসম্ভব ভালোবাসেন এবং মাঠে তাদের জন্য খেলেন। তাঁর ভাষ্যে, 'আমি জানি কিছু মানুষ, যারা হয়তো আমাকে ফলো করে অথবা করে না, কিন্তু সর্বদা ছোট ছোট বিষয়ে আমাকে নিচু করতে পছন্দ করে। তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই আমাদের থেকে ভাল কিছু প্রত্যাশা করতে হলে এই নীচু মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন।" "প্রত্যেকটা ম্যাচে আমরা এমনিতেই অনেক বেশি চাপে থাকি, নতুন কোন চাপ প্রয়োগ না করার জন্যে বিশেষ অনুরোধ করা হল। আর এই মানসিকতার বাইরে যারা আছেন আমি সর্বদা তাদের পাশে আছি।" সেখানে হোটেলে অবস্থানরত আরেক বাংলাদেশি শেখ মিনহাজ হোসেন তার ফেসবুকে লেখেন, "আমাকে বিশ্বাস করতে পারেন। আমি তখনই হোটেলে ঢুকেছি। আশেপাশের সব মানুষ একই কথা বলছিলো। সবাই আরও ওই ছেলেটার উপর ক্ষ্যাপা ছিল। ছেলেটা কেন বেশি বিরক্ত করছিলো, এবং সাকিবকে পিছন থেকে অশালীন মন্তব্য করলো? এখন ফেসবুকে দেখি মানুষ ক্যাপশন দিয়েছে যে, ওটা "নিরাপদ সড়ক চাই" এর ব্যাপারে ছিল। অথচ গতকাল ওইসময় এ ব্যাপারে কোন কথাও হয় নাই।' ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সদ্য সমাপ্ত টি টোয়েন্টি সিরিজে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে জয় পায় বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। যেখানে সিরিজের সেরা ক্রিকেটার হয়েছেন সাকিব। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: আদালতের নির্দেশে হাসপাতালে শহীদুল আলম কেন বাংলাদেশের সিগারেটের বাজারে ঢুকছে জাপান চাকরিতে বস 'ভয়াবহ' হলে কী করবেন? গতকাল মঙ্গলবার থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে যেখানে দেখা যায় সাকিব আল হাসানের সাথে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে দেয়া এক ব্যক্তির তর্ক হচ্ছে। +text: এজন্য এক মাসের জন্য একটি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রণয়ন করে তার ওপর হবে এই মূল্যায়ন। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আজ (বুধবার) এক সংবাদ সম্মেলন করে একথা জানিয়েছন।। তিনি বলেছেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ অনলাইনে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট পাঠিয়ে দেবেন, এবং এরপর অনলাইনে কিংবা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্কুলে গিয়েও উত্তর জমা দেয়া যাবে। শিক্ষামন্ত্রী এও বলছেন, বছর শেষে পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে এই অ্যাসাইনমেন্টের উত্তরপত্রের মূল্যায়ন কোন প্রভাব ফেলবে না। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মাধ্যমিক পর্যায়ে এভাবেই শিক্ষা কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন দীপু মনি। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার সবার আগে যে পদক্ষেপ নিয়েছিল সেটি হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা। আরো পড়তে পারেন: অনলাইন ক্লাসের সুফল শহরে, পিছিয়ে পড়ছে প্রান্তিক শিক্ষার্থীরা সেপ্টেম্বরে কি স্কুল খুলবে? এইচএসসি পরীক্ষা কবে হতে পারে? কোন দেশে পড়তে যেতে চান বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা? এ কারণে গত ১৭ই মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে, এবং অক্টোবরের ৩১ তারিখ পর্যন্ত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়িয়েছে সরকার। এর আগে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা পিইসি, অষ্টম শ্রেণির জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা এবং সর্বশেষ এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রাক-প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত নিজ নিজ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে পরবর্তী শ্রেণীতে প্রমোশন দিতে বলেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সিলেবাসে কী থাকবে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, ৩০ কর্মদিবসে শেষ করা যায় এমন একটি সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে প্রতিটি শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এটি মূলত হবে প্রতিটি ক্লাসে পুরো বছরের জন্য যে সিলেবাস তৈরি করা হয়, তার একটি সংক্ষিপ্ত সংস্করণ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এই সিলেবাস দেয়া হবে। একই সঙ্গে সব স্কুল প্রধানদের কাছেও তা পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দীপু মনি। মূল্যায়ন কীভাবে হবে ওই সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ওপর ভিত্তি করে চার সপ্তাহে চারটি অ্যাসাইনমেন্ট প্রদান করা হবে, এবং তার উত্তর সংগ্রহ করা হবে। এক্ষেত্রে অ্যাসাইনমেন্ট প্রদান করা হবে অনলাইনে, এবং উত্তর অনলাইনে জমা দেয়া যাবে। একই সাথে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্কুলে গিয়েও অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে পারবেন। এবং একটি অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেবার পর পরবর্তী অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করা যাবে। এ বছর এরকম পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে এই সময়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ অন্য কোন পরীক্ষা বা ক���লাসওয়ার্ক প্রদান বা জমা নিতে পারবে না। এরপর চারটি অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেয়ার পর একটি মূল্যায়ন করবে কর্তৃপক্ষ। তবে এই মূল্যায়ন পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে কোন প্রভাব ফেলবে না। মূল্যায়ন যেন 'শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ সৃষ্টি' না করে সে বিষয়টি সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ সচেতন থাকবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। "এটি (মূল্যায়ন) কেবল আমাদের (কর্তৃপক্ষের) বোঝার জন্য যে শিক্ষার্থীর কোন বিষয়ে দুর্বলতা আছে, যাতে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে ওই বিষয়ে বাড়তি নজর দেয়া যায়, যত্ন নেয়া যায়, সেজন্য।" পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এভাবেই মাধ্যমিকের পাঠ কার্যক্রম চলবে। স্কুল খুলবে কবে? স্কুল কবে খুলবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন ঘোষণা দেননি শিক্ষামন্ত্রী। তবে মূল্যায়ন পদ্ধতির মাধ্যমে পরবর্তী শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হওয়ার ঘোষণা আসায় ধরে নেয়া হচ্ছে এ বছর স্কুল খুলছে না। পরিবারের কারো কোভিড-১৯ হলে বাকিরা যে সাতটি কাজ করবেন কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? বিশ্ব মহামারি শেষ হতে কতদিন লাগবে? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় এর মানে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট প্রদান এবং সংগ্রহ প্রক্রিয়ার জন্য স্কুল খোলা থাকলেও পাঠদান কার্যক্রমের জন্য আপাতত স্কুল খুলছে না। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী উল্লেখ করেন, অ্যাইনমেন্টভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত চলবে। স্থানান্তরিত হওয়া শিক্ষার্থীদের কী হবে? কোভিডের কারণে অনেক পরিবার হয়ত এক জায়গা থেকে অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়েছেন, সেই সব পরিবারের শিক্ষার্থীদের পরবর্তী শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য শিক্ষামন্ত্রী বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, "এক হচ্ছে অ্যাসাইনমেন্টগুলো ওয়েবসাইটে ও টেলিভিশনে পাবেন, সুতরাং সেখান থেকে নিয়ে শিক্ষার্থী বা তাদের অভিভাবকেরা স্কুলে জমা দিতে পারবেন। অথবা বর্তমান আবাসস্থলের কাছের মাধ্যমিক স্কুলটিতে গিয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করে সিলেবাস এবং অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করতে পারবেন।" এবং অ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করে সেই প্রতিষ্ঠানে জমা দিতে পারবেন। বাংলা��েশে এ বছর খুলছে না স্কুল, পরবর্তী ক্লাশে উত্তীর্ণ হবার জন্য অ্যাসাইনমেন্টভিত্তিক মূল্যায়ন হবে শিক্ষার্থীদের। +text: নেইমারের বিরুদ্ধেই ধারাবাহিকভাবে সবচেয়ে বেশি ফাউল হয়েছে। কিন্তু ইউরোপীয় গণমাধ্যমের বিচারে, নেইমার হচ্ছেন আসলে পাকা অভিনেতা, খেলার মাঠে পড়ে গিয়ে মারাত্মক চোট পাওয়ার অভিনয়ে তার জুড়ি মেলা নাকি ভার। ব্রাজিল এখন ছিটকে পড়েছে বিশ্বকাপ থেকে। কিন্তু তাই বলে নেইমারকে নিয়ে আলোচনা থেমে নেই। ইন্টারনেটে তাকে নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের শেষ নেই। এরকম একটি বিদ্রুপাত্মক পোস্ট এক কথিত ফুটবল স্কুল নিয়ে, যেখানে নাকি ছেলেদের ডাইভ দিয়ে পড়ে গিয়ে কিভাবে চিৎকার করতে হবে তার প্রশিক্ষণ দেয়া হয়! ফ্রান্সের খেলোয়াড় এবং অভিনেতা এরিক ক্যানটোনা ইউরোস্পোর্ট চ্যানেলের বিশেষজ্ঞ কর্ণারে এরকম কিছু বিদ্রুপাত্মক ভিডিও আপলোড করেছেন। এরকম একটি ভিডিওতে তিনি নেইমারকে তুলনা করেছেন 'চার চাকা লাগানো স্যুটকেসে'র সঙ্গে, যেটি সহজে এই চাকার ওপর ঘুরতে পারে। অন্যদিকে মারাডোনার মতো কিংবদন্তী নেইমারের সমালোচনা করেছেন যেভাবে অন্য কোন খেলোয়াড়ের ছোঁয়া লাগা মাত্র নেইমার যেভাবে ব্যাথা পাওয়ার অভিনয় করেছেন। ভিন্ন চিত্র তবে মনে রাখতে হবে নেইমার হচ্ছে ব্রাজিলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। ব্রাজিলের জন্য টুর্ণামেন্টে তিনি দুটি গোল দিয়েছেন। ২৭ গোলের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন। এবং তের বার গোল মুখে শট নিয়েছেন। তার পরিসংখ্যানের দিকে যদি মনোযোগ দেয়া যায়, তাহলে কথিত নাটুকেপনার বাইরে আরও অনেক মিশ্র চিত্রই কিন্তু আপনি দেখতে পাবেন। সুইস টিভি চ্যানেল আরটিএস স্পোর্টস সম্প্রতি একটি সমীক্ষা প্রকাশ করেছে। এতে তারা দাবি করছে নেইমার এবারের টুর্ণামেন্টে ব্রাজিলের চারটি ম্যাচে নাকি মোট ১৩ মিনিটি ৫০ সেকেন্ড মাটিতে বসে কাটিয়েছে। এর মধ্যে সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাদের প্রথম ম্যাচটিও রয়েছে। এই পরিসংখ্যান এরপর আরও অনেক গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়। শেয়ার করা হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সবচেয়ে বেশি ফাউলের শিকার? তবে আরেকটি তথ্য হজম করার জন্য এক মিনিট সময় নেয়া যাক। ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে নেইমারের বিরুদ্ধেই কিন্তু এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ফাউল হয়েছে! মোট ২৬ বার! নিজে থেকে পড়ে গিয়ে নেইমার আহত হওয়ার ভান করেন বলে অভিযোগ লিওনেল মেসি বা ���্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর চাইতে অনেক বেশি। মেসির বিরুদ্ধে ফাউল হয়েছে ১৫ বার, আর রোনাল্ডোর বিরুদ্ধে ১৪ বার। পরিসংখ্যান ওয়েবসাইট ফাইভ থার্টি এইট ডট কম দাবি করছে, গত তিনটি বিশ্বকাপের পরিসংখ্যান বিবেচনায় নিলে আসলে খেলার মাঠে নেইমারকেই সবচেয়ে বেশি তাড়া করা হয়েছে। প্রতি খেলায় গড়ে তার বিরুদ্ধে ফাউল হয়েছে ৫ দশমিক দুই। অথচ নেইমার এ নিয়ে মাত্র দ্বিতীয় বার বিশ্বকাপ খেলেছেন। রোনাল্ডো আর মেসি বিশ্বকাপ খেলেছেন চার বার করে। এর আগের বার ব্রাজিল বিশ্বকাপে নেইমারের বিরুদ্ধে ফাউল হয়েছিল ১৮ বার। মেসির বিরুদ্ধেও একই সংখ্যায়। তবে মেসি গেল বিশ্বকাপে খেলেছিলেন সাতটি ম্যাচ। আর নেইমার ৫ম ম্যাচেই এমন গুরুতর আঘাত পান যে, মাটিতে পড়ে যান। তার পিঠে আঘাত লেগেছিল কলম্বিয়ার যুনিগার হাঁটুর গুঁতো লেগে। চার বছর আগের বিশ্বকাপে পিঠে গুরুতর আঘাত পান নেইমার মেরুদন্ডের একটি হাড়ে সাংঘাতিক আঘাত পান, তবে সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন। এটি তার খেলোয়াড় জীবনের সমাপ্তি টেনে দিতে পারতো। খেলার মাঠে কী ঘটে তা দেখা এবং এর মানে বোঝার নানা উপায় আছে। আমি নিজে বার বার সহিংস ফাউলের শিকার হয়েছি আমার খেলোয়াড় জীবনে, বলছেন সাবেক বর্ষ সেরা বিশ্ব ফুটবলার এবং বিশ্বকাপ জয়ী তারকা রোনাল্ডো। তার মতে, 'যারা তার ওপর লাথি মারছে তাদের হাত থেকে নেইমার নিজেকে রক্ষা করছেন মাত্র।' আর রেফারিরাও এখানে নেইমারকে রক্ষায় ব্যর্থ হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি। নেইমারের পক্ষে সবচেয়ে জোরালোভাবে দাঁড়িয়েছে তাদের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার একটি সংবাদপত্র 'ওলে'। এই পত্রিকার বিরুদ্ধেই ব্রাজিল বিরোধী ব্যঙ্গ-বিদ্রুপে উস্কানি দেয়ার অভিযোগ আছে। গত দোসরা জুলাই ওলে তাদের ওয়েবসাইটে একটি ভিডিও প্রকাশ করে যেখানে নেইমার এ পর্যন্ত যত শারীরিক আঘাতের শিকার হয়েছেন, তা একসঙ্গে দেখানো হয়েছে। "হ্যাঁ, নেইমার অনেক সময় বাড়িয়ে দেখায় এবং তার নাটুকেপনা তার বিপক্ষেই যায়", বলছেন ডিয়েগো মাসিয়াস। "কিন্তু সব দলই কিন্তু একটার পর একটা নেইমারের বিরুদ্ধে লেগে আছে। খেলার মাঠে তাকে ধারাবাহিকভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে, সারাক্ষণ তাড়া করা হচ্ছে।" ব্রাজিলের সুপারস্টার নেইমারকে নিয়ে এবারের বিশ্বকাপে বিতর্ক কম হয়নি। প্রতিদিনই নানা কারণে সংবাদ হয়েছেন তিনি। +text: বিশ্বকাপে মুখোমুখি দেখায় নিউজিল্যান্ড ভারতের চেয়ে এক ম্যাচ বেশি জিতেছে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হওয়া ছাড়া ৫ ম্যাচ জয় নিয়ে শুরু করে নিউজিল্যান্ড। সেখানেই সেমিফাইনালের পথে এক পা দিয়ে রাখে কেইন উইলিয়ামসের দল। কিন্তু শেষ দিকে পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের কাছে হেরে যায় তারা। পাকিস্তান ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১০৫ রানে অল আউট হয়ে যাওয়ায় নেট রান রেটে যে পিছিয়ে পড়ে সেটা আর গুছিয়ে উঠতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত নেট রান রেটের হিসেবেই নিউজিল্যান্ড সেমিফাইনালে ওঠে। ক্রিকেট বিশ্বকাপের কিছু খবর: এবারের বিশ্বকাপ ক্রিকেট কেন আগের চেয়ে আলাদা বিশ্বকাপ ক্রিকেট: আমেজ ধরে রেখেছে দক্ষিণ এশিয়রা বিশ্বকাপ ইতিহাসে সবচেয়ে কার্যকর অলরাউন্ডার সাকিব এই বিশ্বকাপে সবচেয়ে কম রান করা দলগুলোর একটি নিউজিল্যান্ড। ৩৪৪ ওভার ব্যাট করে ১৬৭৪ রান তুলেছে এই টুর্নামেন্টে। আবার রান দেয়া ও করার হিসেবে, নিউজিল্যান্ড যে রান তুলেছে তার চেয়ে বেশি রান দিয়ে সেমিফাইনালে ওঠা একমাত্র দলও নিউজিল্যান্ড। ১৬৭৪ রানের বিপরীতে নিউজিল্যান্ডের বোলাররা দিয়েছে ১৮৬৮ রান। অপরদিকে ভারত পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে ফেভারিটের মতোই খেলেছে। ৯ ম্যাচ খেলে মাত্র একটিতে হেরেছে ভারত, স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। রাউন্ড রবিন লিগ শেষে পয়েন্ট তালিকার এক নম্বরে ভারত। ব্যাটে ভারতের রান এসেছে ২২৬০, বোলাররা রান দিয়েছে ১৯৯৮। মূলত রোহিত শর্মার ব্যাটেই ভারত টুর্নামেন্টে এমন দাপট দেখিয়েছে। ৮ ম্যাচে ৬৪৭ রান তুলেছেন তিনি, এখন আছেন টুর্নামেন্টের ব্যাটসম্যান তালিকার এক নম্বরে। ভারতের হয়ে এই বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ভিরাট কোহলি আছেন টুর্নামেন্ট তালিকায় নয় নম্বরে। এক বিশ্বকাপে পাচঁটি সেঞ্চুরি করা একমাত্র ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মা প্রথম সেমিফাইনালে যাদের দিকে নজর রাখবেন কেইন উইলিয়ামসন অধিনায়ক, নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দল ব্যাট হাতে নিউজিল্যান্ডের ত্রাতার ভূমিকায় ছিলেন কেইন উইলিয়ামসন টুর্নামেন্টের সেরা রান সংগ্রাহকদের তালিকার দিকে তাকালে উইলিয়ামসনের রান খুব বেশি মনে নাই হতে পারে, তবে তিনি যে রান করেছেন সেটায় নিউজিল্যান্ড দল বিপদ থেকে মুক্তি পেয়েছে বেশ কয়েকবার। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১০ উইকেটে জয় ছাড়া নিউজিল্যান্ডের উদ্ব��ধনী জুটি আর তেমন বলার মতো রান করতে পারেনি। এরপরই হাল ধরেন উইলিয়ামসন, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৭৯, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০৬ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৪৮ রান তোলেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক। মূলত প্রথম পাঁচ ম্যাচের জয়ই নিউজিল্যান্ডকে সেমিফাইনালে উঠতে সাহায্য করে। জসপ্রিত বুমরাহ বোলার, ভারত ক্রিকেট দল ৮ ম্যাচ বল করে ১৭টি উইকেট নিয়েছেন জসপ্রিত বুমরাহ জসপ্রিত বুমরাহ এখন ভারতের পেস বোলিং আক্রমণের নেতৃত্ব দেন। এই বিশ্বকাপেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ৮ ম্যাচে ১৭ উইকেট নিয়ে চার নম্বর সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী এখন বুমরাহ। সেরা পাচঁজন বোলারের মধ্যে সবচেয়ে কম ইকোনমি রেট তার, ৪.৪৮। ইনিংসের শুরু ও শেষে বুমরাহ'র স্পেলে অনেক সময় ম্যাচের গতিপথ নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। পরিসংখ্যান ভারত বনাম নিউজিল্যান্ড মুখোমুখি ১০৬ ম্যাচ ভারত জয়ী ৫৫ নিউজিল্যান্ড জয়ী ৪৫ বিশ্বকাপে মুখোমুখি ৭ ম্যাচ নিউজিল্যান্ড জয়ী ৪ ভারত জয়ী ৩ বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: সূচনা হলো বিশ্বের বৃহত্তম মুক্ত বাণিজ্য এলাকার 'যৌন হয়রানিমূলক' ফোনালাপ ফাঁস করায় শাস্তি হলো নারীর হেডিংলির আকাশে কাশ্মীর ব্যানার নিয়ে তোলপাড় নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপ যাত্রা উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে গিয়েছে এখন পর্যন্ত । +text: দুধের মান পরীক্ষা করছেন এক গবেষক মাস ছয়েক আগে ন্যাশনাল ফুড সেফটি অথরিটি বাজারে তরল দুধ এবং দুগ্ধজাত সামগ্রীর নমুনা নিয়ে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করেছিল। সেখানে বেশিরভাগ নমুনাতে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নানা উপাদানের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) মঙ্গলবার হাইকোর্টে একটি প্রতিবেদন দাখিল করে বলেছে তাদের দ্বারা অনুমোদিত পাস্তুরিত তরল দুধে কোন ক্ষতিকারক উপাদান নেই। মে মাসের ২৩ তারিখ থেকে ২৯ তারিখ পর্যন্ত বিএসটিআই-এর অনুমোদিত ১৮টি কোম্পানির পাস্তুরিত তরল দুধের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে কোন ক্ষতিকারক উপাদান মেলেনি বলে উল্লেখ করা হয়েছে আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনে। বাজারে বিদ্যমান প্যাকেট-জাত তরল দুধের গুণাগুণ নিয়ে দুটো সংস্থার দুই রকমের প্রতিবেদন সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। যদিও উভয় পরীক্ষার মধ্যে সময়ের ব্যবধান প্রায় ছয় মাস। আরো পড়ুন: গরুর দুধে জীবাণ���: নতুন পরিকল্পনা কতোটা কাজে দেবে গরুর দুধে জীবাণু: কী বলছে খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ? দুধ খাওয়ায় কি কোন উপকার হয়? যেসব খাবারের মাধ্যমে দেহে ঢুকছে অ্যান্টিবায়োটিক ঢাকার ভেতরে অনেকেই খাঁটি দুধের নিশ্চয়তা দিয়ে ছোট বড় খামাড় গড়ে তুলেছেন বিএসটিআই-এর পরীক্ষা নিয়ে পুরোপুরি আশ্বস্ত হবার কারণ দেখছেন না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক এ কে লুৎফর কবির। তিনি বলেন, ছয়মাস আগে ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা বাজার থেকে তরল দুধ এবং দুগ্ধজাত সামগ্রীর নমুনা সংগ্রহ করে গবেষণাগারে পরীক্ষা করেছে। অধ্যাপক কবির বলেন, ন্যাশনাল ফুড সেফটি অথরিটি নমুনা পরীক্ষা করে তরল দুধে সেসব ক্ষতিকর উপাদান পেয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারেও মোটামুটি একই রকম ফলাফল এসেছে। "এই যে তারা সীসা এবং অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া গেছে বলছে সেটা মিথ্যা কথা না। এটা সত্য," বলছিলেন অধ্যাপক কবির। বাজারে বিএসটিআই-এর অনুমোদন ছাড়াও আরো অনেক কোম্পানি আছে যারা প্যাকেট-জাত পাস্তুরিত দুধ বিক্রি করে। বিএসটিআই বলছে তারা শুধু তাদের দ্বারা অনুমোদিত কোম্পানিগুলোর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে। বিএসটিআই-এর এ পরীক্ষা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অধ্যাপক কবির। "যখন বিএসটিআই তাদের কাছে স্যাম্পল (নমুনা) চায়, তখন তারা বেস্ট স্যাম্পল দেয়। ওখানে কোন সমস্যা থাকেনা। কারণ ওরা সেভাবেই বিএসটিআইকে স্যাম্পল দেয়," বলছিলেন অধ্যাপক কবির। তিনি মনে করেন, বিএসটিআই যদি বিভিন্ন জেলা থেকে ভিন্ন-ভিন্ন সময়ে তরল দুধের নমুনা সংগ্রহ করতো, তাহলে ফলাফল ভিন্ন হতে পারতো। ফ্যাক্টরি থেকে খুচরা বাজার পর্যন্ত দুধ পৌঁছাতে যে সময় লাগে তখন অনেক ক্ষেত্রে সেটি যথাযথ মাত্রায় সংরক্ষণ করা হয়না। সেজন্য দুধে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি বাড়ে বলে অধ্যাপক কবির উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের অনেক নারীরা খামার করে থাকেন তবে বিএসটিআই-এর আইনজীবী সরকার এম হাসান বলেন, সংস্থাটি আদালতে যে প্রতিবেদন দাখিল করেছে, সেটি তৈরি করা হয়েছে দুইভাবে নমুনা সংগ্রহের মাধ্যমে। মি: হাসান বলেন, ফ্যাক্টরি থেকে সরাসরি নমুনা সংগ্রহের পাশাপাশি খুচরা বাজার থেকেও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সর্বশেষ যেসব নমুনা সংগ্রহ করা সেগুলো নিয়ে কোন প্রশ্নের অবকাশ থাকতে পারেনা বলে মনে তিনি। তবে এবারের পরীক্ষায় ক্ষতিকারক উপাদানের অস্তিত্ব না থাকলেও ভবিষ্যতে যে থাকবে না সেটি নিশ্চিত করে বলা যায়না বলে উল্লেখ করেন মি: হাসান। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: 'তিনি আমার পছন্দের নন': প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় ৬৫ শতাংশ মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে আলোচ্য বিষয় কী? 'জাতীয় গোঁফ' নিয়ে মস্করা ভারতের সামাজিক মাধ্যমে বাংলাদেশের বাজারে যেসব তরল দুধ পাওয়া যায় সেগুলো কতটা মানসম্মত সে বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই উদ্বেগ রয়েছে। +text: ইকবাল আহমেদ: ব্রিটেনের সবচেয়ে সফল বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ব্রিটেনের সবচেয়ে সফল বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের একজন ইকবাল আহমেদ। ব্রিটেনে তিনি সবচেয়ে বেশি চিংড়ি আমদানি করেন, আবার একই সঙ্গে সবচেয়ে বেশি চিংড়ি রফতানি করেন। তাকে এজন্যে 'কিং অব প্রন' বলেও ডাকা হয়। মিস্টার আহমেদের আত্মজীবনী গ্রন্থের শিরোণামও 'কিং প্রন - ড্রিমিং বিগ এন্ড মেকিং ইট হ্যাপেন।' সানডে টাইমস' ব্রিটেনের শীর্ষ ধনীদের যে তালিকা করে, একবার সেই তালিকায়ও তার নাম উঠেছিল। ইকবাল আহমেদের সীমার্ক গ্রুপের ব্যবসা এখন বিস্তৃত ইউরোপ-আমেরিকার অনেক দেশে। কিন্তু ব্রেক্সিটকে ঘিরে গত তিন বছর ধরে যে অনিশ্চয়তা, সে কারণে এখন তিনি ব্রিটেন থেকে তার ব্যবসার একটা বড় অংশ নিয়ে যাচ্ছেন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। "ব্রেক্সিটের প্রথম ধাক্কাতেই আমরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। কারণ পাউন্ডের দাম একদম পড়ে গেল। তারপর এখন তো চলছে অনিশ্চয়তা। ইউরোপে আমাদের যারা কাস্টমার, তারা এখনো বিশ্বাস করতে পারছে না যে আমরা ওদের মালামাল সরবরাহ করতে পারবো। আমরা তাদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছি যে আমরা পারবো, কিন্তু তারপরও ওরা উদ্বিগ্ন।" ইকবাল আহমেদ তার সী ফুড এবং অন্যান্য ব্যবসা পরিচালনা করেন ম্যানচেস্টার থেকে। ব্রেক্সিট নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ার পর তিনি তার ব্যবসা আর সম্প্রসারণ করতে পারছেন না। কারণ তাকে এখন বেশি নজর দিতে হচ্ছে ব্যবসা টিকিয়ে রাখার দিকে। "গত তিন বছরে আমাদের কোন এক্সপানশন হয়নি, ব্যবসায় যেটা আমাদের ন্যাচারালি হয়। কিভাবে আমরা ব্যবসা টিকিয়ে রাখবো, সেটাই আমাদের সবসময় চিন্তা ছিল।" এই অনিশ্চয়তা কাটাতে শেষ পর্যন্ত তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, ম্যানচেস্টার থেকে তিনি তার ব্যবসার কিছু অংশ ইউরোপে নিয়ে যাবেন। ইউরোপের সঙ্গে আম���র সী ফুডের যে ব্যবসা, গত দুই মাসে সেটা আমি নিয়ে গেছি জার্মানি, বেলজিয়াম এবং পোল্যান্ডে। সেখানে আমরা নতুনভাবে সব কিছু সেট-আপ করেছি। ব্যবসার মূল ম্যানেজমেন্ট আমি ম্যানচেস্টারেই রাখছি। কিন্তু ইউরোপে আমরা যে পণ্য বিক্রি করি, সেটা এখন আমরা ইউরোপেই প্রক্রিয়াকরণ করবো। এটা করার পরই এখন গ্রাহকরা আমাদের ওপর কিছুটা আস্থা ফিরে পেয়েছেন। গত তিন মাসে আমরা এটা করতে পেরেছি।" কিন্তু তার এই সিদ্ধান্তের ফলে ব্রিটেন এরই মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বলছেন তিনি। ব্রেক্সিট নিয়ে অনিশ্চয়তায় সীমার্ক গ্রুপ এখন তাদের ব্যবসা সরিয়ে নিচ্ছে অনান্য দেশে "আমার এখানে যে দুশো মানুষের চাকুরি ছিল, তাদের একশো জনের চাকুরি চলে যাবে। কারণ ডিস্ট্রিবিউশন, অর্ডার পিকিং, ট্রান্সপোর্ট, এগুলো আর এখানে এত দরকার হবে না। এখন এটা আমরা করবো বার্লিনে, ব্রাসেলসে, সেখানেই নতুন কর্মসংস্থান হবে।" কিন্তু ব্রেক্সিট নিয়ে যে অনিশ্চয়তা, তাতে ব্রিটেন যে একেবারেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে বেরিয়ে যাবে, সেটাও তো বলা যাচ্ছে না। যদি সেটা না হয়, তখন তিনি কী করবেন? "এখন যদি আবার ব্রিটেন ইইউ-তে থেকেও যায়, আমরা কিন্তু ইউরোপের ব্যবসা ইউরোপেই রেখে দেব। শুধু আমি না, আমার মতো আরও যারা ইউরোপে রপ্তানি করে, সবাই সবার ব্যবস্থা করে ফেলেছে।" ইকবাল আহমেদ এই অবস্থার জন্য দোষারোপ করছেন রাজনীতিকদের। "রাজনীতিকদের ব্যর্থতা এটা। কিছু রাজনীতিকের ব্যক্তিগত স্বার্থ এবং আকাঙ্খার কারণে আমরা সবাই আজ ভুক্তভোগী।" 'মেড ইন ইংল্যান্ড' মামুন চৌধুরী: 'মেড ইন ইংল্যান্ড' ব্রান্ডিং এর কারণে ব্যবসায় সাফল্য, কিন্তু এ কারণেই এখন আবার সংকটে মামুন চৌধুরী আরেকজন সফল ব্রিটিশ-বাংলাদেশি ব্যবসায়ী। তার ব্যবসার সাফল্যের মূলে রয়েছে 'মেড ইন ইংল্যান্ড' ব্রান্ডিং। ইংল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী ফ্যাশনের নানা রকম কোট তৈরি করে তা রফতানি করে তার কোম্পানি 'লন্ডন ট্রাডিশন'। মানুষ তাদের পণ্য কেনে এ কারণেই যে, এগুলো ইংল্যান্ডে তৈরি। ব্রেক্সিট নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে তিনি যে ইকবাল আহমেদের মতো তার ব্যবসা অন্য কোথাও সরিয়ে নেবেন সেই সুযোগ নেই। কারণ তাহলে 'মেড ইন ইংল্যান্ডে'র ট্যাগ তিনি আর ব্যবহার করতে পারবেন না। আরও পড়ুন: ব্রেক্সিট নিয়ে পাঁচটি প্রশ্ন ও তার উত্তর ব্রেক্সিট: আর কী বিকল্প হাতে আছে ব্রিটেনের? ব্রেক্সিট: যে সাতটি পথে হাঁ���তে পারে ব্রিটেন "যদি ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে কোন চুক্তি ছাড়া বেরিয়ে যায়, তাহলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে আমাদের মতো যারা মেড ইন ইংল্যান্ড ব্র্যান্ড নিয়ে ব্যবসা করে তারা", বলছেন তিনি। মামুন চৌধুরী তার কাঁচামালের প্রায় ৯০ শতাংশ আমদানি করেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে। আবার রফতানিও করেন মূলত ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং এশিয়ার কিছু দেশে। ব্রেক্সিট নিয়ে অনিশ্চয়তা তার ব্যবসাকে সংকটে ফেলে দিয়েছে। "এখন ব্রিটেন যদি বেরিয়ে যায়, আমাকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে কাঁচামাল আমদানি করলে হয়তো শুল্ক দিতে হবে, বা আরও নানা সমস্যা হবে। হয়তো জিনিসপত্র আনতে দেরি হবে। আবার যখন রপ্তানি করবো, তখন আমার প্রোডাক্টের দামও একটু বেশি পড়বে, কারণ এখন পাউন্ডের মূল্য পড়ে গেছে ইউরোর তুলনায়।" মামুন চৌধুরী বলছেন, তিনি শুধু যে ইউরোপের সঙ্গেই ব্যবসা করতে গিয়ে সমস্যায় পড়বেন তা নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে গেলে অন্য দেশের সঙ্গে ব্যবসার ক্ষেত্রেও তিনি সংকটে পড়বেন। লন্ডন ট্রাডিশনে তৈরি ঐতিহ্যবাহী ডিজাইনের কোট বিভিন্ন দেশে রফতানি করেন মামুন চৌধুরী যেমন জাপানে আমি রফতানি করি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানের মধ্যে একটা চুক্তি হয়েছে গত ফেব্রুয়ারীতে, এটা করার জন্য গত ৬ বছর ধরে ইইউ এবং জাপান কাজ করছিল। এই চুক্তির ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে শুল্ক ছাড়াই জাপানে পণ্য রফতানি করা যায়। অথচ আগে দশ শতাংশের বেশি হারে শুল্ক দিতে হতো। ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার কারণে এই সুবিধাটা এখন আমি পাই জাপানে পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে। কিন্তু যখন আমরা কোন চুক্তি ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসবো, তখন এই সুবিধা আর পাবো না।"। ব্রেক্সিট নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে মামুন চৌধুরির রফতানি কমে গেছে প্রায় পনের শতাংশ। "এবছর যত ট্রেড শো তে আমরা গিয়েছি, তার সব ক'টাতেই লোক এসেছে কম। সবার প্রশ্ন একটাই, ব্রেক্সিটের পর আমরা কী করবো? আমাদের পরিকল্পনা কী?" "যেহেতু কাস্টমারদের আমরা সঠিক জবাব দিতে পারি নাই, তাই আমাদের কাস্টমাররাও দ্বিধা-দ্বন্দ্বে। আমাদের অর্ডার কমে যাচ্ছে।" ব্রেক্সিট নিয়ে যে চরম অনিশ্চয়তা চলছে, তার ফলে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরাও এখন চরম উদ্বেগে। তাদের ব্যবসার ওপর এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। অনেকে ব্রিটেন থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন ইউরোপে। +text: বিধ্বস্ত হওয়া আলজেরিয়ান বিমানে থাকা ২৫৭ জন আরোহী নিহত হয়েছেন ২০১৮ ১১ এপ্রিল: আকাশে ওড়ার কিছুক্ষণ পর আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্সের কাছে একটি সামরিক বিমান বিধ্বস্ত হলে মারা যান অন্তত ২৫৭ জন। নিহতদের অধিকাংশই ছিলেন সেনাবাহিনী ও তাদের পরিবারের সদস্য। ১২ মার্চ: ৭১ জন যাত্রী বহনকারী একটি বিমান নেপালের কাঠমান্ডু বিমনাবন্দরের ল্যান্ডিংয়ে বিধ্বস্ত হলে মারা যায় ৪৯ জন। ১৮ই ফেব্রুয়ারি: ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে উড্ডয়নের পর ইরানের জাগরোস পর্বতমালায় বিধ্বস্ত হয় একটি বিমান। এই দুর্ঘটনায় মারা যায় ৬৬ জন। ১১ই ফেব্রুয়ারি: মস্কোর দোমোদেদোভো বিমানবন্দর থেকে ওড়ার কিছুক্ষণ পরই শহরের ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বের আর্গুনোভো গ্রামে বিধ্বস্ত হয় সারাতভ এয়ারলাইন্সের একটি বিমান। দুর্ঘটনায় মারা যায় যাত্রী ও ক্রু সহ বিমানে থাকা ৭১ জন। ২০১৭ ২০১৭ সালে কোনো যাত্রীবাহী বিমান দুর্ঘটনা ঘটেনি। বাণিজ্যিক বিমানযাত্রার ইতিহাসে সবচেয়ে নিরাপদ বছর ছিল এটি। ২০১৬ ২৫শে ডিসেম্বর: রাশিয়ার সোচি থেকে ওড়ার কিছুক্ষণ পর কৃষ্ণ সাগরে বিধ্বস্ত হয় একটি রাশিয়ান সামরিক বিমান। মারা যান বিমানে থাকা ৯২ জন যাত্রী ও ক্রু। কৃষ্ণ সাগরে বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্বজন ৭ই ডিসেম্বর: পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান দুর্ঘটনায় মারা যায় বিমানে থাকা ৪৮ জন। পাকিস্তানের এই বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান বিমানে থাকা ৪৮ জন ২৮শে নভেম্বর: ব্রাজিলিয়ান ফুটবল ক্লাব শ্যাপেকোয়েন্সের খেলোয়াড়দের বহনকারী একটি বিমানে জ্বালানি শেষ হয়ে গেলে কলম্বিয়ার মেডেলিনের কাছে সেটি বিধ্বস্ত হয়ে মারা যায় বিমানের ৭১ জন। ১৯শে মে: প্যারিস ও কায়রোর মধ্যে হারিয়ে যাওয়া ইজিপ্ট এয়ারের বিমান বিধ্বস্তের খবর নিশ্চিত করেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ। ১৯শে মার্চ: ফ্লাই দুবাইয়ের একটি বোয়িং বিমান রাশিয়ার রোস্তভ-অন-দনে বিধ্বস্ত হলে মারা যান বিমানের ৬২ জন যাত্রী। ২০১৫ ৩১শে অক্টোবর: রাশিয়ার একটি বিমান সংস্থার যাত্রীবাহী বিমান মিশর থেকে উড্ডয়নের ২২ মিনিট পর সিনাই পর্বতমালার ওপর বিধ্বস্ত হলে মারা যায় ২২৪ জন আরোহী। পরে ইসলামিক স্টেট জঙ্গীদের স্থানীয় প্রতিনিধিরা জানায় সিরিয়ায় রুশ অভিযানের প্রতিবাদে তারা ব���মানটি ধ্বংস করেছে। ৩০শে জুন: ইন্দোনেশিয়ার একটি সামরিক পরিবহন বিমান মেদান শহরের একটি আবাসিক এলাকায় ভূপাতিত হয়। সেনাবাহিনী পরে জানায় বিমানে থাকা ১২২ জন বাদেও আরো ১৯ জন মারা যায় ঐ দুর্ঘটনায়। ২৪শে মার্চ: বার্সেলোনা থেকে ডুসেলডর্ফ যাওয়ার পথে ফ্রেঞ্চ আল্পসের কাছে দিনিয়ে শহরে বিধ্বস্ত হয় একটি এয়ারবাস। বিমানের ১৪৮ জন যাত্রীর সবাই মারা যায় ঐ দুর্ঘটনায়। ২০১৪ ২৮শে ডিসেম্বর: জাভা সমুদ্রে নিরুদ্দেশ হয়ে যায় ইন্দোনেশিয়া থেকে সিঙ্গাপুর যেতে থাকা এয়ার এশিয়ার একটি বিমান। বিমানটিতে ক্রু ও যাত্রীসহ মোট ১৬২ জন ছিল। ২৪শে জুলাই: মালি থেকে আলজিয়ার্স যাওয়ার পথে বুরকিনা ফাসোর সীমানার কাছে ১১৬ জন যাতী নিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যায় একটি বিমান। ২৩শে জুলাই: পেঙ্গু দ্বীপে অবতরণের সময় সমুদ্রে বিধ্বস্ত হয় ট্রান্স এশিয়া এয়ারওয়েজের ৫৮জন যাত্রী বহনকারী একটি বিমান। ঐ দুর্ঘটনায় মারা যায় বিমানে থাকা ৪৮ জন। ১৭ই জুলাই: পূর্ব ইউক্রেনের কাছে গ্রাবোভে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের একটি বিমান বিধ্বস্ত হলে মারা যায় বিমানরে ২৪৮ জন। বিমানটি গুলি করে ভূপাতিত করার অভিযোগ আনা হয় রাশিয়ান বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে, তবে তারা ঐ অভিযোগ অস্বীকার করে। মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের বিধ্বস্ত হওয়া ফ্লাইট এমএইচ১৭ ৮ই মার্চ: কুয়ালালামপুর থেক বেইজিং যাওয়ার পথে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের এমএইচ৩৭০ বিমানটি নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর বিমান চলাচলের ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যাপক ও খরচসাপেক্ষ অনুসন্ধান কার্যক্রম চালানো হয়। তবে ২০১৫ র জুলাইয়ে দক্ষিণ ভারত মহাসাগরের রিইউনিয়ন আইল্যান্ডে বিমানের একটি অংশ ভেসে ওঠার আগ পর্যন্ত বিমানটি সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ১১ই ফেব্রুয়ারি: উত্তর-পশ্চিম আলজেরিয়ার পাহাড়ী অঞ্চলে একটি সামরিক পরিবহন বিমান বিধ্বস্ত হলে মারা যায় ৭৮ জন। ২০১৩ ১৭ই নভেম্বর: রাশিয়ার কাজানে অবতরনের সময় বিধ্বস্ত হয় একটি বোয়িং ৭৩৭ বিমান। মারা যায় বিমানে থাকা ৫০ জন। ১৬ই অক্টোবর: লাওসের লাও এয়ারলাইন্সের একটি বিমান মেকং নদীতে বিধ্বস্ত হলে ৪৯ জন মারা যায়। ২০১২ ৩রা জুন: নাইজেরিয়ার বৃহত্তম শহর লাগোসের কাছে যাত্রীবাহী একটি বিমান বিধ্বস্ত হলে মারা যায় বিমানের ১৫০ জন যাত্রী। ২০শে এপ্রিল: পাকিস্তানের ইসলামাবাদের কাছে বিধ্বস্ত হলে ম���রা যায় একটি বোয়িং ৭৩৭ বিমানে থাকা ১২৭ জন। গত কয়েক বছরের গুরুত্বপূর্ণ বিমান দুর্ঘটনার কালপঞ্জি +text: হোটেলটির সম্মুখভাগ পুরোটা ধসে পড়েছে এবং স্টিলের কাঠামাো দেখা যাচ্ছে। পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ফুজিয়ান প্রদেশের উদ্ধারকর্মীরা ঐ হোটেলের ধ্বংসস্তুপের ভেতরে তল্লাশি চালাচ্ছেন। কিন্তু এখনো পযর্ন্ত এটা পরিস্কার না যে ঠিক কী কারণে হোটেলটি ধসে পড়লো। ঘটনাটি শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ঘটে। বিধ্স্ত হোটেলের সামনে উদ্ধারকর্মীরা। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে এসেছিল এরকম লোকজনকে সেখানে কোয়ারেন্টিন করে রাখা হয়েছিল। হোটেলটি ২০১৮ সালে চালু হয় এবং এতে ৮০টি কামরা রয়েছে। বেইজিং নিউজ ওয়েবসাইট কে একজন নারী বলেছেন, তার এক বোন এবং আত্মীয়কে সেখানে কোয়ারেন্টিন করে রাখা হয়েছিল। তিনি বলছিলেন, "আমি তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারছি না। তারা তাদের ফোন ধরছেন না"। এখন পর্যন্ত ৪৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে "আমিও আরেকটা হোটেলে কোয়ারেন্টিনে ছিলাম। আমি খুব উদ্বিগ্ন। আমি বুঝতে পারছি না কি করবো। তারা ভালো ছিল। ডাক্তাররা তাদের প্রতিদিন তাপমাত্রা নিচ্ছিলো। এবং টেষ্টের ফলাফল দেখাচ্ছিল সবকিছু স্বাভাবিক আছে"। শুক্রবার পর্যন্ত ফুজিয়ানে ২৯৬ জন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। এর বাইরে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: মোদীর ঢাকা সফরের পক্ষে-বিপক্ষে নানা অবস্থান বাংলাদেশের সাথে কুয়েতের কেন বিমান চলাচল স্থগিত রাজপরিবারের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সৌদি আরব চীনের উদ্ধারকারীরা পূর্বাঞ্চলীয় কোয়াংঝো শহরে ধসে পড়া একটি হোটেলের ভেতর থেকে চার জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখো ২৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের সন্ধানে উদ্ধার অভিযান অব্যহত রয়েছে। +text: বাংলাদেশে আইম শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা বিধিবহির্ভূতভাবে গ্রেপ্তার হচ্ছেন বলে বিবৃতি প্রকাশ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ নির্বাচনী প্রচারণার সময় সহিংসতা রোধে এবং সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত ও অন্যান্য রাষ্ট��রের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো উচিত বলে মন্তব্য করা হয় ঐ বিবৃতিতে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, "স্বতন্ত্র ও বিরোধী কন্ঠকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে দমন করছে আওয়ামী লীগ সরকার, যেন ক্ষমতাসীন দল পূর্ণ রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ নিতে কোনো বাধার সম্মুখীন না হয়।" "প্রধান বিরোধী দলের সমর্থক ও সদস্যরা গ্রেপ্তার, হত্যা, এমনকি গুমের শিকার হচ্ছেন, যার ফলে এক ধরণের ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে যা বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের পথে অন্তরায়।" হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এই বিবৃতির বিষয়ে সরকারের কোন প্রতিক্রিয়া তাৎক্ষণিকভাবে জানা্ যায়নি। 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ধরপাকড়' অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের শুরু পর্যন্ত পাওয়া তথ্য পর্যালোচনা করে বিধিবহির্ভূতভাবে গ্রেপ্তার, সরকার বিদ্রোহ এবং বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের শাস্তি দেয়া এবং ক্ষমতাসীন দলের যুব ও ছাত্র সংগঠনের দ্বারা সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শনের বেশকিছু ঘটনা ঘটেছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় বিবৃতিতে। বিবৃতিতে বলা হয় বিরোধী দলের বিরুদ্ধে এই ধরণের অভিযান এবং কার্যক্রমকে আইনি বৈধতা দেয়া অস্পষ্টভাবে বর্ণিত নীতিমালার কারণেও নির্বাচনের আগে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। এরকম অবস্থায় নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে বিচার বিভাগ ও নির্বাচন কমিশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। আরো পড়তে পারেন: তরুণ ভোটারদের প্রধান টার্গেট করবে বিএনপি সংসদ নির্বাচন: প্রচারণার শুরুতেই সহিংসতায় নিহত ১ আদালতের প্রতি খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের অনাস্থা ইসির বিবৃতি-বক্তব্য-ভাষা নিয়ে প্রশ্ন কেন বিরোধীদলের কর্মী-সমর্থকদের বিধিবহির্ভূতভাবে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে বিরোধী দল বিএনপি'র বরাত দিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতিতে বলা হয়, সেপ্টেম্বরে বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকদের ধরপাকড় শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত তিন লাখেরও বেশি ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে বিএনপি কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এসব মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং মামলার অধীনে কয়েক হাজার বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে উঠে আসে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতিতে। এসব মামলার অধিকাংশই বিধিবহির্ভূতভাবে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি'র নেতাকর্মীরা। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা যদিও 'সবাই যেন নির্বাচনী আচরণবিধি' মেনে চলে সে বিষয়ে জোর দিয়েছেন, বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ কমিশন ক্ষমতাসীন দলকে সমর্থন দিচ্ছে। এর উদাহরণস্বরূপ তুলে ধরা হয়, মনোনয়নপত্র বাতিলের দৌড়ে ১৪১ জন বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের সাথে আওয়ামী লীগের তিনজন প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিলের বিষয়টি। বিএনপি বলছে সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত তিন লাখেরও বেশি ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে বিএনপি কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, "আওয়ামী লীগ পাঁচ বছর আগে ক্ষমতায় আসে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই। তার পর থেকেই মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের বিষয়টিকে পরিহাসের বস্তুতে পরিণত করেছে তারা।" মি. অ্যাডামস মন্তব্য করেন, সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং মানবাধিকার খর্ব হওয়ার বিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়ে দাতা সংস্থাগুলোর উচিত অতিসত্ত্বর মানবাধিকার সংরক্ষণের বিষয়ে উদ্যোগী হওয়া। এছাড়া নির্বাচনের প্রচারণার শুরুতেই রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীন সংঘর্ষে বহু মানুষের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে বলেও বিবৃতিতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে ও ভয় দেখিয়ে বাংলাদেশের নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী মত প্রকাশের অধিকারকে হুমকির মুখে ফেলছে বলে এক বিবৃতি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। +text: মত প্রকাশের স্বাধীনতার দাবিতে সমাবেশ। শুনতে যেমনই শোনাক, বাংলাদেশে সাংবাদিকদের এরকম নির্যাতনের শিকার হওয়া কোন বিরল ঘটনা নয়, বরং এ প্রবণতা বাড়ছে । তার পরেও নানা কারণে আইনের আশ্রয়ও নিতে চান না অনেক সাংবাদিক। বিগত কয়েক দশকে বাংলাদেশে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন, হয়রানি ও আক্রমণের বেড়ে যাওয়ায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এ পেশার অনেকেই - বলছে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষার জন্য কাজ করে এমন একটি সংস্থা। এই পেশায় কেরিয়ার গড়ার আশা নিয়ে দুই বছর আগে বাংলাদেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে সংবাদ প্রতিবেদক হিসেবে কাজ শুরু করেন নয়ন। পেশাগত কা��ে গত বছর তিনি সরকারি ভূমি অফিসে গেলে সেখানকার কয়েকজন কর্মকর্তা কোন কারণ ছাড়াই তার ও তার সহকর্মীর ওপর চড়াও হন। তাদের উপর্যুপরি মারধরে গুরুতর আহত হন তারা। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানালেও কোন মহল থেকে কোন ধরণের সাড়া পাননি মি. নয়ন। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, "আমরা অ্যাসাইনমেন্টের জন্য ভূমি অফিসে গেলাম। তখন কয়েকজন আমাদেরকে একটা ঘরে লক করে বলল যে, ফাজলামি করিস?" "এরপর আমাদেরকে একটা কথা বলারও সুযোগ দেয়নি। এলোপাথাড়ি পেটাতে থাকলো। আমার হাত ভেঙে যায়, মাথা ফেটে যায়। মানে একটা রক্তারক্তি অবস্থা।" কর্তৃপক্ষ বললেন, 'এটা দুর্ঘটনা, মেনে নেয়াই উচিত হবে' এ ঘটনার পর মি. নয়নের অফিসে জরুরি বৈঠক বসে। তিনি আশা করেছিলেন যে অফিস কর্তৃপক্ষ তার এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ উল্টো তাকে বলেন, এটি নিছক দুর্ঘটনা যা মেনে নেয়াই উচিত হবে। এই বিষয়গুলো যেন তিনি যেন ভুলে যান। এমন আচরণে ভীষণ হতাশ হয়ে পড়েন মি. নয়ন। তিনি প্রশ্ন রাখেন, কেন তার মতো গণমাধ্যম-কর্মীদের এ ধরণের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছিলাম তাহমিনা রহমানের কাছে। তিনি সাংবাদিকদের অধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করছেন। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: কুয়েতে গৃহকর্মী বেচাকেনার অনলাইন 'দাসীর বাজার' বেঁটে পুরুষদের কী যৌনসঙ্গী পেতে সমস্যা হয়? রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেয়ার উদ্যোগ আটকে গেছে মাঠে নামা ছাড়া আর কিছু ভাবছি না: সাকিব ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রে যা নেয়া যাবে না পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার এক সাংবাদিক। "সাংবাদিকদের কোন সাপোর্ট সিস্টেম নেই" তাহমিনা রহমানের মতে, আইনের দীর্ঘসূত্রিতা, জটিল বিচারিক প্রক্রিয়া সেইসঙ্গে রাষ্ট্র ও প্রতিষ্ঠান পক্ষ থেকে কোন ধরণের সহযোগিতা না থাকার কারণে সাংবাদিক নির্যাতন ও সহিংসতা থামানো যাচ্ছেনা। সাংবাদিকদের স্বার্থ রক্ষায় সক্রিয় কোন প্ল্যাটফর্ম না থাকায় এই পেশা দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, "সাংবাদিক নির্যাতনের মামলাগুলো দিনের পর দিন ঝুলিয়ে রাখা হয়। একের পর এক তারিখ পড়তে থাকে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা সংক্রান্ত আইনগুলোয় সাংবাদিকদের সুরক্ষার কথা সেভাবে বলা নেই। এ কারণে তারা দ্রুত বিচার পান না। এছাড়া তাদের কোন সাপোর্ট সিস্টেম নেই যারা তাদের এসব সমস্যা নিয়ে কথা বলবে।" আইনি লড়াই করতে চান না সাংবাদিকরা এসব কারণে অনেক সময় দেখা যায় সাংবাদিকরা নির্যাতন, হয়রানি বা হুমকি-ধমকির শিকার হলেও বিষয়গুলো নিয়ে আইনি লড়াই করতে চান না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা স্থানীয়ভাবে বিষয়গুলো মীমাংসা করে ফেলেন বলে জানান মিসেস রহমান। তিনি বলেন, "সাংবাদিকরা নির্যাতনের শিকার হলেও সেগুলো আদালতে নিতে চান না। কেননা মামলা করতে গেলে প্রতিষ্ঠান থেকে যে সাপোর্ট লাগে বা অর্থনৈতিকভাবে যে সাপোর্ট লাগে, সেটা তাদের সবার থাকেনা। এ অবস্থায় বিচার নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে যায়।" সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন। সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো নিষ্ক্রিয় কেন? সাংবাদিকদের স্বার্থ রক্ষার লক্ষ্যে একাধিক সংগঠন গড়ে উঠলেও সেগুলো সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন বন্ধে বা নির্যাতনের ঘটনার দ্রুত বিচারের দাবি আদায়ে কতোটা তৎপর সে নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এ ব্যাপারে প্রেসক্লাবের সেক্রেটারি ফরিদা ইয়াসমিন জানান, সংগঠনগুলোর মধ্যে একে তো ঐক্যের অভাব, তেমনি রয়েছে প্রভাবশালীদের চাপ এবং সাংবাদিকদের চাকরির নিশ্চয়তা গড়ে না ওঠায় সংগঠনগুলো দাবি আদায়ে বার বার ব্যর্থ হচ্ছে। "সাংবাদিকদের ইউনিয়নগুলো রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত। কোন একটা বিষয়ে যদি সবার এক হওয়ার প্রয়োজন পড়ে, তখন দেখা যায় রাজনৈতিকভাবে কেউ কেউ এটার ফায়দা নিতে চেষ্টা করে। আবার সাংবাদিকদেরও সাহসের অভাব আছে, কারণ সাংবাদিকদের চাকরির নিশ্চয়তা এখনও গড়ে ওঠেনি।" "জব সিকিউরিটি যেখানে নাই সেখানে তারা সোচ্চার হবে কিভাবে।" বলেন মিসেস ইয়াসমিন। সাংবাদিক হত্যা বা নির্যাতনের সাথে যারা জড়িত তারা রাজনৈতিক বা ব্যবসায়িকভাবে খুবই প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণ জোগাড় করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান তিনি। বাংলাদেশের সংবিধানে মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলা হলেও রাষ্ট্রীয় সামাজিকভাবে সেই স্বাধীনতা নিশ্চিত করা যায়নি বলে জানান নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক মি. নয়ন। কোন বিচার না পেয়ে এক পর্যায়ে চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন তিনি। কিন্তু এখনও নিরাপত্তাহীনতা তাকে তাড়া করে বেড়ায়। আরো পড়তে পারেন: চাকরি হারানোর ভয় জেঁকে বসেছে গণমাধ্যমে বাংলাদেশে মফস্বল সাংবাদিকতা কতটা ঝুঁকির? 'আক্রমণের নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন না' মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর "আমাদেরকে একটা কথা বলারও সুযোগ দেয়নি। এলোপাথাড়ি পেটাতে থাকলো, আমার হাত ভাঙলো, মাথা ফেটে গেল । রক্তারক্তি অবস্থা" - এ হচ্ছে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে যাওয়া একজন সাংবাদিকের অভিজ্ঞতা। +text: সুন্দরী প্রতিযোগিতার বিরুদ্ধে নারীবাদীদের বিক্ষোভ ব্রা পোড়ানো নারীবাদীর যে কাল্পনিক ইমেজ বা ছবি এরপর জনমানসে তৈরি হলো, সেরকম ঘটনা কি বাস্তবেই ঘটেছিল? একদল নারী সেদিন প্রতিবাদের অংশ হিসেবে অনেক কিছুই ছুঁড়ে ফেলেছিলেন- ঘর মোছার মপ, লিপস্টিক, হাই হীল জুতা। তাদের কাছে এসব ছিল নারীর পরাধীনতার প্রতীক। একটি 'ফ্রিডম ট্র্যাশ ক্যান' বা 'স্বাধীন ময়লার ঝুড়ি'তে তারা এসব ছুঁড়ে ছুঁড়ে মারছিলেন। সেই প্রতিবাদের সংগঠকদের একজন ছিলেন রবিন মর্গান। তারা পথচারীদেরও তাদের আন্দোলনে সামিল হওয়ার ডাক দিচ্ছিলেন। "আমার মনে আছে এক তরুণী তার ব্রা খুলে ফেললো। শার্টের নীচ থেকে সে তার ব্রা খুলে বের করে আনলো তারপর সবার উল্লসিত চিৎকারের মধ্যে সেটি ছুঁড়ে ফেললো।" সারা বিশ্বে সংবাদ শিরোণাম হলো সেই ঘটনা। নারীবাদীদের সেই প্রতিবাদ হয়ে গেল ইতিহাসের অংশ। ফ্রিডম ট্র্যাশ ক্যান: এতে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছিল অনেক কিছু এই বিক্ষোভে যারা যোগ দিয়েছিলেন, তারা এর আগেও নানা আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। বিশেষ করে আমেরিকার বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলন কিংবা ভিয়েতনাম যুদ্ধ বিরোধী আন্দোলন। কিন্তু নারীর অধিকারের জন্য রাস্তায় নামা অনেকের জন্য ছিল সেই প্রথম। "তখন আমরা তরুণ বিপ্লবী। মাত্র নারীবাদকে আবিস্কার করছি", বলছেন রবিন মর্গান। তারা বুঝতে পারছিলেন এটা এমন এক যুদ্ধ, যেটা তাদের নিজেদেরই করতে হবে। "আমরা জানতাম যে ডানপন্থী পুরুষরা আমাদের মিত্র নয়। আর বামপন্থী পুরুষদের আমরা নিজেদের ভাই বলে গণ্য করলেও পরে যখন নিজেদের অধিকারের কথা বলতে শুরু করলাম তখন দেখলাম আসলে তা নয়। " ৫০ বছর পরেও যে সেদিনের সেই আন্দোলন এতটা ঢেউ তুলবে, সেটা তারা ভাবতে পারেননি। সত্যিকারের নারীবাদী আন্দোলনের ঢেউ সেদিন থেকেই শুরু হয়েছিল বলে কোন কোন ইতিহাসবিদ বলে থাকেন। "এটা শুনতে বেশ ভালো লাগলেও আসলে তা নয়। তারও আগে ন্যাশনাল অর্গেইজেশন ফর উইমেনের মতো নারীবাদী সংস্থা তার আগে থেকেই ছিল", বলছেন রবিন মর্গান। কিন্তু সেদিনের প্রতিবাদের যে ছবিটা জনমানসে গেঁথে গিয়েছিল, তা হচ্ছে নারীবাদীরা তাদের ব্রা পুড়িয়ে ফেলছে! যেটি আসলে বাস্তবে ঘটেইনি। রবিন মর্গান রবিন মর্গান বলছেন, কিছু মহিলা তাদের অন্তর্বাস খুলে 'ফ্রিডম ট্র্যাশ ক্যানে' ছুঁড়ে ফেলেছিলেন সেটা সত্যি। কিন্তু তারা সেগুলো পোড়াননি। আসলে একজন মহিলা সাংবাদিকের এক রিপোর্টের লাইন থেকে এই কল্পকাহিনীর শুরু । "পুরুষরা তাদের ড্রাফট কার্ড পোড়াচ্ছে, এরপর কী? মেয়েরা কি তাদের ব্রা পোড়াবে", এই ছিল রিপোর্টের লাইন। স্থানীয় সাংবাদিকরা বলেছেন, তারা মনে করতে পারেন যে ট্র্যাশ ক্যানটিতে আগুন দেয়া হয়েছিল, কিন্তু সাথে সাথেই সেই আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়। রবিন মর্গান অবশ্য দৃঢ়তার সঙ্গেই বলছেন, ব্রা পোড়ানোর কোন ঘটনাই ঘটেনি। "এটা একটা কল্পকাহিনী। আমরা বহু বছর ধরে এটিকে খন্ডনের চেষ্টা করছি। নির্যাতনের চিহ্ণ কি মেক-আপে ঢাকা যায়? মিছিলে বহন করা প্ল্যাকার্ডে ছুঁড়ে দেয়া হয় এই প্রশ্ন। ১৯৬৮ সালে 'মিস আমেরিকা' সুন্দরী প্রতিযোগিতায় কেবল বিশেষ ধরণের নারীর সৌন্দর্যকেই বিবেচনায় নেয়া হতো। 'প্রতিযোগীদের সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে, তাদের শ্বেতাঙ্গ হতে হবে' এই নিয়ম অবশ্য ততদিনে পাল্টেছে। কিন্তু মিস আমেরিকা প্রতিযোগিতায় তখনো পর্যন্ত কোন অশ্বেতাঙ্গ নারী জিততে পারেননি। "১৯২১ সালে এই প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার পর একজন কৃষ্ণাঙ্গও কোনদিন এর ফাইন্যালে পৌঁছায়নি", ট্র্যাশ ক্যান বিক্ষোভের একটি প্রেস রিলিজে এভাবেই এই আন্দোলনের কথা তুলে ধরা হয়েছিল। "কখনো কোন পুয়ের্তোরিকান, আলাস্কান, হাওয়াইয়ান বা মেক্সিকান আমেরিকান এতে জেতেনি। এমনকি একজন সত্যিকারের মিস আমেরিকান, অর্থাৎ ইন্ডিয়ান আমেরিকানও নয়।" আরও পড়ুন: ইতিহাসের সাক্ষী: লেসবিয়ান নারীদের যৌথ সংসার নারীবাদ মানে পুরুষ বিদ্বেষ নয়, পুরুষের সমান হওয়া সৌদি নারীরা এখনও যে ৫টি কাজ করতে পারে না সুন্দরী প্রতিযোগিতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীরা যে দশটি আপত্তি তুলে ধরেছিলেন, বর্ণবাদ ছিল তার একটি। ৫০ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রে নারী অধিকার আন্দোলন এখন আবারও খবরের শিরোণামে। নারীদের মিছিল এবং 'মি-টু' আন্দোলন আবারও উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে নারীবাদী আন্দোলনে। ৫০টি রাজ্যের নির্বাচনে এবার রেকর্ড সংখ্যাক নারী নির্বাচনে দাঁড়িয়েছে। মিস আমেরিকা প্রতিযোগিতাকে বর্ণবাদী বলে বর্ণনা করেন বিক্ষোভকারীরা। রবিন মর্গান অভিভূত এই জাগরণ দেখে। "এদের মধ্যে গৃহিনী আছেন, শিক্ষক আছেন, ক্যাশিয়ার আছেন। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, অনেক হয়েছে, এবার ঘুরে দাঁড়ানোর সময়।" আজকে যদি আবার 'ফ্রিডম ট্র্যাশ ক্যান' আন্দোলন হয়, তাতে কি ছুঁড়ে ফেলবেন তারা? "সব প্রধান ধর্মের সব প্রতীক। কারণ তারা এত বেশি পুরুষতান্ত্রিক।" এছাড়া হাই হীল জুতা, আন্ডারওয়্যার এবং সহিংসতায় ভরা পর্ণোগ্রাফিরও আছে তার তালিকায়। তিনি ছুঁড়ে ফেলতে চান ওপিয়ডের মতো ড্রাগ এবং ডায়েট পিলও। তার কাছে এসব কিছু নারীকে পুরুষের অধীন রাখার আয়োজন ছাড়া আর কিছু নয়। "আমি ভেতরে ভেতরে আসলে একজন কবি। প্রতীক এবং উপমা- এসব আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসব যে কত শক্তিশালী তা আমি জানি। 'ফ্রিডম ট্র্যাশ ক্যান' কত শক্তিশালী তা আমি বুঝি।" পঞ্চাশ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে 'মিস আমেরিকা' সুন্দরী প্রতিযোগিতার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামলেন একদল নারী। ব্রা খুলে হাতে নিয়ে মিছিলে শরিক হয়েছিলেন তারা। নারীবাদীরা তাদের ব্রা পুড়িয়ে প্রতিবাদে নেমেছেন বলে এরপর যে কাহিনী দিকে দিকে পড়েছিল, তার শুরু এখান থেকেই। +text: সৈয়দপুরের হাতিখানা কায়েম ক্যাম্প সকাল নয়টা। হাতিখানা কায়েম ক্যাম্প। সকালের প্রাত্যহিক কাজে ব্যস্ত নারী-পুরুষ-শিশু। সরু গলির দুইপাশে ছোট ছোট ঘরে এক- একটি পরিবারের বাস। একটি মুদি দোকানের টিভিতে চলছে পাকিস্তানি একটি চ্যানেল। এখানকার সবাই কথা বলছেন উর্দুতে। সৈয়দপুর শহরে হাতিখানা ক্যাম্পসহ ২২টি ক্যাম্প রয়েছে যেখানে উর্দুভাষীরা বাস করেন। স্থানীয়ভাবে তারা বিহারী নামে পরিচিত। বাংলাদেশের যেসব অঞ্চলে বিহারীরা রয়েছেন তার মধ্যে বেশিরভাগের বসবাস সৈয়দপুরে। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুই আলাদা রাষ্ট্র তৈরি হলে-উর্দুভাষী অনেকে চলে আসেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে। আবু সাদের বর্ধমানের বাড়ি। আব্দুল কাইয়ুম খান। এদের বেশির ভাগ আসেন ভারতের বিহার রাজ্য থেকে। তেমনি একজন আব্দুল কাইয়ুম খান। মি. খান বলছিলেন "ভারতে দাঙ্গা শুরু হলে আমরা এপারে চলে আসি। আমরা ছিলাম মুসলমান, উর্দু আমাদের ভাষা। পাকিস্তানকে নিজের দেশ মনে করে চলে আসি এইখানে। আমরা সব সময় পাকিস্তানেই যেতে চেয়েছি"। আব্দুল কাইয়ুম খানের মত কয়েক লক্ষ মানুষ তখন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আসেন। তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের করা যাটের দশকের শেষাংশে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে পূর্ব পাকিস্তানে ২০ লক্ষ উর্দুভাষী আসেন। ভারত ছেড়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আসা এক বাঙালির কথা ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুই আলাদা রাষ্ট্র তৈরি হলে-উর্দুভাষী অনেকে চলে আসেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে। পূর্ব পাকিস্তানের স্থানীয় মানুষের ভাষা ছিল বাংলা। সাংস্কৃতিক ভিন্নতাও ছিল। ফলে সব মিলিয়ে এই কয়েক লক্ষ লোকের আগমন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙ্গালীদের কাছে আগন্তুকের মত ছিল। আবার অন্যদিকে উর্দুভাষীরাও যুগের পর যুগ ধরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান এবং এখনকার বাংলাদেশে বাস করলেও ঠিক বাংলাদেশের মুল সমাজে মিশতে পারেননি। এর কারণ কি? সৈয়দপুরের আরেকটি ক্যাম্প-বালুরেস ক্যাম্প। ৭০টা পরিবারের বাস এখানে। উর্দুভাষী মুহাম্মদ এরফানের জন্ম বাংলাদেশে। তিনি বলছিলেন "বিহারি বলেই আমাদের আলাদা করে রাখা হয়, আমরা কেন ক্যাম্পে থাকবো? আমার বাবা-মা না হয় বিহারী ছিল কিন্তু আমার তো জন্ম বাংলাদেশে তাহলে কেন এই বৈষম্য? আমার নিজেরো প্রশ্ন এটাই"। সৈয়দপুরে উর্দুভাষীরা অনেকেই কাপড়ের ব্যবসা করেন বিহারীদের অনেকেই মনে করেন তাদের প্রতি বছরের পর বছর বৈষম্যমূলক আচরণ করে আসছে বাংলাদেশের মানুষ। তবে স্থানীয় বাঙ্গালীদের রয়েছে অন্য যুক্তি। আমিনুল হকের স্থানীয় সাংবাদিক, সৈয়দপুরের বাসিন্দা তিনি। বলছিলেন প্রচন্ডভাবে এই বিভেদ লক্ষ করা যায়। মি. হকের মতে "দীর্ঘদিন তাদের সাথে উঠা-বসা করে মনে হয়েছে-তারা মনে করে বাংলাদেশ সৃষ্টি সঠিক ছিল না। তাছাড়া ভাষাটা একটা বড় ব্যাপার। তারা সব সময় পাকিস্তান যেতে চেয়েছে। যারা বাংলাদেশকে মানে না, তাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক কিভাবে গড়ে উঠবে"। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর পরেই যে সমস্যাটা প্রধান হয় সেটা হল পূর্ব পাকিস্তানে আসা উর্দুভাষীদের- মন-মানসিকতা। "বাংলাদেশে ভারতীয় অভিবাসী" নামে একটি বিশ্লেষণধর্মী বইতে উল্লেখ করা হয়েছে বাংলা ভাষা কে তারা আপন করে নিতে পারেন নি। ভাষা ছাড়াও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের পার্থক্যের কারণে তারা স্থানীয় জনতা থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখতেন। বইটির লেখক এবং প্রবীণ উর্দু কবি আহমদ ইলিয়াসের সাথে ঢাকায় আমি বিষয়টি নিয়ে কথা বলছিলাম। তিনি বলছিলেন "উর্দুভাষীদের অনেকেই এক ধরণের শ্রেষ্ঠত্বমন্যতায় ভুগছিলেন তাদের দক্ষতা,শিক্ষা ও সামাজিক মর্যাদার কারণে। এর ফলে আর্থিক বা সামাজিক বন্ধন গড়ে উঠেনি যা পড়ে বিহারী বা অবাঙ্গালীদের সাথে বাঙ্গালী জনসাধারণ থেকে তাদের পৃথক করে তোলে"। ভারত-ভাগের ফলে ৭০ বছর আগে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে অনেক মুসলমান উর্দুভাষীরা চলে আসেন। উর্দু ভাষা সবখানে শুরুটা সেখান থেকে হলেও পরে এর একটা রাজনৈতিক রূপ পায়। উর্দুভাষী মানুষেরা বেশিরভাগই চেয়েছিল পাকিস্তান নামের রাষ্ট্রের নাগরিক হতে। তাঁদের একটি অংশ পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলে। আর পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানে তাদের নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য তাদেরকে তথ্যদাতা বা সহকারী হিসেবে অনেকটা ব্যবহার করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল বলছিলেন ১৯৭১ সালে বিহারীদের কর্মকাণ্ড স্থানীয় বাঙ্গালীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করে যেটাতে পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করে। "১৯৭১ সালে পরিষ্কার বিভেদ তৈরি হয়। কিছু কিছু উর্দুভাষী পাকিস্তানিদের 'কোলাবরেটর' হিসেবে যে ভাবে কাজ করে সেটাকে সাধারণ মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। স্বাধীনতার পরে তাদেরকে এক-পাক্ষিক ভাবে দেখা হয়েছে। যদিও বাংলাদেশে জন্ম নেয়া পরের প্রজন্ম এটাতে জড়িত ছিল না। কিন্তু তাদেরকেও এক কাতারে ফেলা হয়েছে। যেখান থেকে আজ পর্যন্ত বের হয়ে আসতে পারেনি" বলছিলেন মেসবাহ কামাল। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস বিহারী জনগোষ্ঠীর একাংশের বাঙ্গালী-বিরোধী ভূমিকা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়। এছাড়া বিহারীদের কর্মকাণ্ড বাঙ্গালীর মুখে মুখে ছড়িয়ে পরে। ফলাফল হয় ভয়াবহ। 'রেপ অফ বাংলাদেশ' বই এর লেখক অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের বর্ণনা অনুযায়ী "হাজার হাজার মুসলিম যারা বিহার থেকে আগত তাদের নির্মমভাবে নিশ্চিহ্ন করে ফেলা হয়েছিল। চট্টগ্রাম, খুলনা ও যশোরের মত বড় শহরগুলোতে ২০ হাজারের বেশি অবাঙ্গালীর লাশ পাওয়া গিয়েছিল"। একটি ক্যাম্পের মধ্যেকার দৃশ্য তবে ঠিক কী পরিমাণ বিহারী জনগোষ্ঠী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় তার সঠিক কোন হিসাব পাওয়া যায়নি। ফলে স্বাধীনতা উত্তর সময়কালে বিহারী ক্যাম্পগুলো উচ্ছেদের ব্যাপক চেষ্টা শুরু করে বাংলাদেশ। ততদিনে দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যেকার বিশ্বাস,আস্থা তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে তেরোটা ভিন্ন-ভিন্ন অঞ্চলের ১১৬টা ক্যাম্পে তিন থেকে সাড়ে তিন লাখে��� মতো উর্দুভাষী মানুষ বসবাস করছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের সরকার উর্দুভাষীদের সুপ্রিম কোর্টের আদেশে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু তাতে করে কি সমস্যার সমাধান হয়েছে? ঢাকায় মিরপুর এবং মোহাম্মদপুরে রয়েছে দুটি বড় ক্যাম্প। যেখানে প্রায় তাদেরকে উচ্ছেদের অভিযোগ উঠে। উর্দুভাষী একজন মোহাম্মদ নাদিম বলছিলেন "আমরা এদেশের মানুষের সাথে থাকতে চায় কিন্তু শিক্ষা, চাকরি থেকে শুরু করে সব স্থানে আমাদের সাথে বৈষম্য করা হয়। এখনো কোন কিছুই হলেই বিহারীর বাচ্চা বলে গালি শুনতে হয়"। বাঙ্গালী সমাজে মিশতে না পাড়ার ক্ষেত্রে উর্দুভাষী বিহারীদের রয়েছে তাদের নিজস্ব যুক্তি। আর বাঙ্গালীদের রয়েছে তাদের ব্যাখ্যা। তবে এই যুক্তিতর্ক থেকে একটা বিষয় অত্যন্ত পরিষ্কার যে- ভাষা, সংস্কৃতি এবং রাজনৈতিক ইতিহাসের একটা বড় প্রভাব এখনো কাজ করছে দুই জনগোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে। ঢাকা থেকে ২০০ কি.মি.দূরে উত্তরের ছোট শহর সৈয়দপুর। +text: কল্পিতচিত্র: চীনের দূরের অংশে নামবে চ্যাং'ই-৪ নামের রোবটযান চাং'ই-৪ নামের এই অভিযানে চাঁদে 'ভন কারমান ক্র্যাটার' নামের যে অংশে রোবট যানটি নামবে, চাঁদের সেই অংশটি কখনো পৃথিবীর দিকে ঘোরে না। ফলে এই অংশটি নিয়ে বরাবরই মানুষের আগ্রহ রয়েছে। শিচ্যাং উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে রোবটটি পাঠানো হয়েছে। এর মাধ্যমে চাঁদের পাথর আর মাটির নমুনা সংগ্রহের এই পথ উন্মুক্ত হচ্ছে চীনের জন্য। তবে জানুয়ারি মাসের আগে এই চন্দ্র রোবটটি চাঁদে অবতরণ করতে পারবে না। আরো পড়ুন: বোমা মেরে চাঁদ কেন উড়িয়ে দিতে চেয়েছিল নাসা চাঁদ দেখার বিষয়টি চূড়ান্ত হয় কীভাবে? মহাকাশে এবার 'মেইড ইন চায়না' নকল চাঁদ! 'ভর কারমান ক্র্যাটার' নামে চাঁদের ওই অংশটি নিয়ে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ অনেকদিনের পুরনো। কারণ এখানে চাঁদের সবচেয়ে পুরনো আর নানা উপাদানে সমৃদ্ধ এলাকা চাঁদের দক্ষিণ মেরুর আইকন বেসিন অবস্থিত। ধারণা করা হয়, কোটি কোটি বছর আগে একটি বিশাল উল্কাপিণ্ডের আঘাতের কারণে এই এলাকাটি তৈরি হয়েছিল। এই মিশনের মাধ্যমে ওই এলাকার ভৌগলিক বৈচিত্র্য এবং পাথর ও মাটির বৈশিষ্ট্য বোঝা যাবে বলে বিজ্ঞানীর আশা করছেন। চাঁদের অন্ধকার দিক পৃথিবী থেকে সবসময়ে চাঁদের একটি অংশই দেখা যায়। কারণ চাঁদ পৃথিবীর চারদিকে প্রদক্ষিণ করতে যে সময় নেয়, আবার একই সময় নিজের অক্ষ পথে ঘুরতেও সেই সময় লাগে। ফলে পৃথিবীর দিকে সবসময় চাঁদের একটি মুখই থাকে। যদিও ওই অংশটিকে বিজ্ঞানীরা 'ডার্ক সাইড' বা 'অন্ধকার দিক' বলে ডেকে থাকেন, কিন্তু সেখানেও আসলে সমান হারে সূর্যের আরো পড়ে। বিজ্ঞানীদের এই 'অন্ধকার দিক'-এর আসলে এভাবে অর্থ করা যেতে পারে, যে অংশটি পৃথিবীর মানুষ দেখেনি। পৃথিবীর কাছাকাছি অংশের তুলনায় এই দূরের অংশটি বেশ আলাদা। এখানে জমাট পুরনো ভূত্বক রয়েছে, যার চারদিকে রয়েছে অসংখ্য গর্ত তবে পৃথিবীর কাছাকাছি অংশের তুলনায় এই দূরের অংশটি বেশ আলাদা। এখানে জমাট পুরনো ভূত্বক রয়েছে, যার চারদিকে রয়েছে অসংখ্য গর্ত। সেখানে বেশ কিছু অশ্বখুর আকৃতির আগ্নেয়গিরি জাত শিলা রয়েছে, যেরকমটা রয়েছে পৃথিবীর কাছের অংশেও। যে শক্তির কারণে দক্ষিণ মেরুর আইকন বেসিনের তৈরি হয়েছে, সেটি হয়তো চাঁদের ওপরের আবরণ ভেঙ্গে অনেক গভীরে চলে গেছে। সেক্ষেত্রে চাং'ই-৪ এর কাজ হবে, এসব উপাদান পরীক্ষা করে পৃথিবীর এই একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহের ইতিহাস আবিষ্কার করা। বিবিসি নিউজ বাংলার অন্যান্য খবর: বাংলাদেশে মি-টু আন্দোলন: কী হতে পারে পরিণতি চীনা কোম্পানি হুয়াওয়ে নিয়ে কেন এত সন্দেহ নির্বাচনের খবর সংগ্রহ নিয়ে উদ্বেগ কতটা যুক্তিযুক্ত এই মিশনের আরেকটি লক্ষ্য হবে, চাঁদের অপর পাশে একটি বেতার যোগাযোগের পরিবেশ তৈরি করা এবং সেখানে ভবিষ্যতের টেলিস্কোপ স্থাপনের জন্য একটি ক্ষেত্র তৈরি করা। ৩ কেজি আলুর বীজ আর ফুলের বীজ এই মিশনের মহাকাশযানটিতে করে ৩ কেজি আলুর বীজ আর ফুলের বীজ নিয়ে যাচ্ছে, যা দিয়ে চাঁদে জীববিজ্ঞানের কিছু পরীক্ষা চালানো হবে। কৃত্রিম পরিবেশ তৈরির 'চাঁদের ছোট জীবমণ্ডল' নামের এই নকশাটি চীনের ২৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনায় করা হয়েছে। ''চাঁদে আমরা বীজের অঙ্কুরোদগম এবং আলোক সংশ্লেষণ প্রক্রিয়াটি পরীক্ষা করে দেখতে চাই'' চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা শিনহুয়াকে এর আগে বলেছেন এই গবেষণা প্রকল্পের প্রধান লিউ হানলোং। প্রকল্পের প্রধান নকশাকার শেই জেঙশিন বলেছেন, ''এই ক্ষুদ্র জীবমণ্ডলের তাপমাত্রা আমাদের অবশ্যই ১ ডিগ্রি থেকে ৩০ ডিগ্রির মধ্যে রাখতে হবে এবং আর্দ্রতা ও পুষ্টির ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে।'' যেহেতু চাঁদের ওই অংশটি পৃথিবী থেকে দেখা যায় না, তাই মিশন যানটিকে কুয়িকিয়াও নামের একটি কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে এসব তথ্য পৃথিবীত�� পাঠাতে হবে। এই বছরের মে মাসে ওই উপগ্রহটি উৎক্ষেপণ করেছে চীন। এই মহাকাশযানটি হচ্ছে চাং'ই-৩ এর পরবর্তী সংস্করণ। ২০১৩ সালে চাঁদে ওই যানটি পাঠিয়েছিল চীন। ২০১৩ সালে চাঁদে নেমেছিল চীনের ইয়ুতু রোবটযান চাঁদ নিয়ে চীনের পরিকল্পনা এই যানটিতে দুইটি ক্যামেরা রয়েছে। একটি অংশ তেজস্ক্রিয়তা যাচাই করতে পারে এবং আরেকটি অংশ মহাকাশের স্বল্পমাত্রার তরঙ্গ পর্যালোচনা করতে পারে। চাঁদের ভূপৃষ্ঠের নীচে কি আছে, সেটি পরীক্ষা করে দেখার জন্য একটি রাডার রয়েছে। এমন কিছু যন্ত্র রয়েছে, যেটি খনিজ উপাদান সনাক্ত করে বিশ্লেষণ করতে পারে। চাঁদ নিয়ে গবেষণায় চীনের বিশাল কর্মসূচীর অংশ হচ্ছে এই মিশন। প্রথম এবং দ্বিতীয় চাং'ই মিশনের উদ্দেশ্য ছিল কক্ষপথ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ। তবে তৃতীয় আর চতুর্থ মিশনের লক্ষ্য চাঁদের ভূপৃষ্ঠ। চাং'ই পাঁচ আর ছয়ের লক্ষ্য হবে চাঁদ থেকে সংগৃহীত পাথর আর মাটির নমুনা ফিরিয়ে এনে গবেষণাগারে যোগান দেয়া। বিবিসি নিউজ বাংলার অন্যান্য খবর: হামাসের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব জাতিসংঘে নাকচ কারা 'হ্যাক' করছেন নিজেদের শরীর, আর কেন? যেখানে হোটেলে মিলবে আধাগ্লাস পানি 'প্রতিদিন আমি ধর্ষণের শিকার হয়েছি' চাঁদের অদেখা অংশে প্রথমবারের মতো একটি রোবট যান নামানোর অভিযান শুরু করেছে চীন। দেশটির গণমাধ্যম এই খবর দিয়েছে। +text: ইসরায়েল আর ফিলিস্তিন বিরোধের কেন্দ্রে রয়েছে জেরুসালেম নগরী দেশটির প্রেসিডেন্ট মারিও আব্দো বেনিতেজ বলছেন, তিনি মধ্যপ্রাচ্যে একটি স্থায়ী শান্তি অর্জন করতে চান। তবে এর জবাবে ইসরায়েল বলছে, তারা প্যারাগুয়েতে থাকা ইসরায়েলি দূতাবাস বন্ধ করে দেবে। আর ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা খুব তাড়াতাড়ি দক্ষিণ আমেরিকান এই দেশটিতে দূতাবাস খুলবে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, প্যারাগুয়ের এই সিদ্ধান্ত দুই দেশের সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলবে। আরো পড়তে পারেন: ফিলিস্তিনি-ইসরায়েলি সংঘাতের মূলে যে দশটি প্রশ্ন জেরুসালেম: যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যান জাতিসংঘের জেরুসালেম নিয়ে ট্রাম্প কেন শান্তির পথে হাঁটছেন না গত বছরের ডিসেম্বরে জেরুসালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেয়ার পরপরই প্যারাগুয়ের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হোরাসিও কার্টেস তাদের দূতাবাস স্থানান্তরের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই সিদ্ধান্তের সঙ্গে তখনি দ্বিমত জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী আব্দো বেনিতেজ। জেরুসালেমের মর্যাদা নিয়ে এতো বিতর্ক কেন? কারণ ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘাতের কেন্দ্রস্থলে রয়েছে এই শহরটি। জেরুসালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির নিন্দা করেছে ফিলিস্তিনিরা। তারা বলছে, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা হারিয়েছে। মার্কিন ওই ঘোষণাকে 'অগ্রহণযোগ্য এবং অকার্যকর' ঘোষণা করে বেশিরভাগ সদস্যের ভোটে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। তারা সেটি বাতিলের দাবি জানায়। জেরুসালেমকে চিরস্থায়ী এবং অবিভক্ত রাজধানী হিসাবে মনে করে ইসরায়েল। তবে পূর্ব জেরুসালেমকে নিজেদের ভবিষ্যত রাজধানী হিসাবে দাবি করে ফিলিস্তিন। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের সময় থেকে ওই এলাকা ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে জেরুসালেমের ওপর ইসরায়েলের সার্বভৌমত্ব কখনোই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়নি। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: 'আমাকে জোর করে আনা হয়েছে, আর আসবো না' বাংলাদেশের ইসলামপন্থী নেতাদের কেন ডাকছে ভারত ৪০ লাখ পাউন্ডের লটারি যেভাবে বদলে দিল মেলিসার জীবন 'ভাঁজ করার' স্মার্টফোন বাজারে আনছে স্যামসাং? দূতাবাস স্থানান্তরের তিনমাসের মাথায় প্যারাগুয়ের নতুন সরকার ঘোষণা দিয়েছে যে, জেরুসালেম থেকে তারা আবার দূতাবাস তেল আভিভে সরিয়ে নিতে যাচ্ছে। +text: ৮ নভেম্বর তফসিল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে কমিশনের একটি সভার পর নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা রেডিও টিভিতে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে তফসিল ঘোষণা করবেন। বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা কাদির কল্লোল বলছেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে নির্বাচনের শিডিউল পেছানোর যে লিখিত আবেদন করা হয়েছিল, নির্বাচন কমিশন তা কার্যত অগ্রাহ্য করলো। শনিবার কমিশনের কাছে এক চিঠিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এখন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না করার দাবি জানায়। তাদের যুক্তি ছিল - যেহেতু সরকারের সাথে তাদের সংলাপ শেষ হয়নি, ফলে তফসিল দিলে সেই আলোচনা গুরুত্ব হারাবে। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের পর বিএন���ি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা মওদুদ আহমেদ হতাশা প্রকাশ করেন। বিবিসিকে তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণার এই সিদ্ধান্ত সরকারের সাথে তাদের সংলাপকে 'গুরুত্বহীন' করে দেবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অবশ্য তফসিল পেছানোর সেই দাবির কড়া সমালোচনা করে। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেন, তফসিল পেছালে বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে, সেটি হুমকিতে পড়তে পারে। দলের এক সিনিয়র নেতা বিবিসিকে বলেছেন, বিরোধীদের এই দাবির পেছনে কোন 'কূটকৌশল' থাকতে পারে। সংলাপের জন্য নতুন চিঠি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড: কামাল হোসেন আজ (রোববার) প্রথম সংলাপের ভিত্তিতে এখন ছোট পরিসরে আলোচনা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে তাদের সাত দফা দাবির সাংবিধানিক এবং আইনগত দিক বিশ্লেষণের জন্য উভয়পক্ষের বিশেষজ্ঞসহ সীমিত পরিসরে আলোচনার কথা বলা হয়েছে। নতুন দফা সংলাপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত জানা যায়নি। তবে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেছেন, বিরোধী জোটের সাথে আরও আলোচনা করার ক্ষেত্রে তাদের আপত্তি নেই, তবে তফসিল পেছানোর কোনো প্রশ্ন নেই। একজন বিশ্লেষক বলছেন, তফসিল ঘোষণার পর আলোচনা করে কোন ফলাফল আসবে না। অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বিবিসিকে বলেন,"ঐক্যফ্রন্ট আগের সংলাপে দাবিগুলো দিয়েছে। এখন তারা আলোচনায় রূপরেখা দেবে। তফসিল ঘোষণা করলে তখন অন্যরকম আবহাওয়া তৈরি হবে। আলোচনার তাৎপর্য থাকবে না।" বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ৮ই নভেম্বর বৃহস্পতিবার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। +text: খালেদা জিয়া (ফাইল ছবি) শনিবার খালেদা জিয়ার তৃতীয় দফার পরীক্ষায় তার করোনাভাইরাস নেগেটিভ ফলাফল আসে বলে ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের একজন এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া করোনামুক্ত হয়েছে এবং পোস্ট করোনার চিকিৎসা চলছে। ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে এখন তার পোস্ট কোভিড এবং অন্যান্য জটিলতার চিকিৎসা চলছে বলে এই চিকিৎসক জানিয়েছেন। রোববার একটি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য প্রসঙ্গ�� বলেছেন,''আশার কথা হচ্ছে, শী ইজ শোয়িং এ সাইন অব প্রোগ্রেস, যদিও এখনো তাকে বিভিন্ন রকম চিকিৎসাগত যে পদ্ধতিগুলো, সেগুলো একেবারে সিসিইউ ছাড়া অন্য কোথাও সম্ভব না। সেগুলো যা যা করা দরকার তারা (চিকিৎসকরা) সব কিছুই সেখানে (হাসপাতালে) করছেন।'' ''তার কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে তার এবং তার যে সমস্ত সমস্যা মূলত দেখা গিয়েছিল, সেই সমস্যাগুলো ক্রমান্নয়ে উন্নতির দিকে আসছে। কিন্তু এখনো তার যে মূল সমস্যাগুলো আছে, আপনারা জানেন তিনি অনেকগুলো অসুখে ভুগছেন দীর্ঘকাল থেকে এবং দীর্ঘকাল কারাভোগ করার কারণে কোন চিকিৎসা না হওয়ার কারণে সেগুলো বেড়েছে,এবং কোন কোন ক্ষেত্রে এই বয়সে তার সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।'' এ কারণে মেডিকেল বোর্ড সার্বক্ষণিকভাবে তার দিকে লক্ষ্য রাখছেন বলে তিনি জানান। চিকিৎসকরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে তার চিকিৎসা করছেন বলে তিনি জানান। গত ১১ এপ্রিল গুলশানের বাসায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। গত ২৭শে এপ্রিল পরীক্ষার জন্য তাকে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তেসরা মে তিনি শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নিয়ে যাওয়া হয়। এখনো তিনি সিসিইউতেই আছেন। খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরেই ডায়াবেটিস বা আর্থরাইটিসসহ নানা রোগের চিকিৎসা নিয়েছেন এবং এখন ডায়াবেটিসের কারণেও তার অন্য চিকিৎসায় সাবধানতা অবলম্বন করতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। রোববার এই বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার পাঁচই মে বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন। শামীম ইস্কান্দার বলেছেন, ডাক্তাররা তার বোন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেয়ার পর তারা সরকারের কাছে এই আবেদন করেছেন। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন এই আবেদনটিকে সরকার ইতিবাচকভাবেই দেখছে। এর আগে যে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার যে নির্বাহী আদেশ দিয়েছিলো সরকার তাতে বলা হয়েছিলো মুক্তি পেয়ে মিসেস জিয়াকে বাসাতেই থাকতে হবে এবং এ সময় তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না। ২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। দেশজুড়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর ২০২০ সালের ২৫শে মার্চ ছয় মাসের জন্য নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেয়েছিলেন মিসেস জিয়া। এরপর প্রথমে সেপ্টেম্বরে ও পরে চলতি বছরের মার্চে আবারো ছয় মাসের জন্য তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: অনিয়ন্ত্রিত চীনা রকেট ফিরে এলো পৃথিবীতে, পড়েছে ভারত মহাসাগরে জেরুজালেমে দ্বিতীয় রাতের মতো সহিংসতায় বহু আহত বাংলাদেশে ফেরিঘাটে জনস্রোত ঠেকাতে রবিবার থেকে বিজিবি মোতায়েন করোনা টিকার প্রথম ডোজ নেয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ না পেলে কী হবে করোনাভাইরাসে শনাক্ত হওয়ার প্রায় চার সপ্তাহ পরে করোনামুক্ত হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। +text: পুলিশ বলছে দুজনকে আটক করা হয়েছে তবে বিস্তারিত কিছু এখনও জানা যায়নি পুলিশ বলছে, রোববার রাতে কুইবেক ইসলামিক সেন্টারের ওই মসজিদের ভেতরে বন্দুকধারীরা হামলা চালায়। এ ঘটনাকে একটি সন্ত্রাসী হামলা বলে উল্লেখ করছে পুলিশ। প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও মসজিদে হামলার ঘটনায় দু:খ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে একে 'সন্ত্রাসী হামলা' বলে বর্ণনা করেছেন। ঘটনার পর কুইবেক ইসলামিক সেন্টারের ফেসবুক পাতায় ঘটনাস্থল ও পুলিশের ছবি পোস্ট করে বলা হয় "গুলির ঘটনায় কজনের মৃত্যু হয়েছে"। পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় দু'জনকে আটক করা হয়েছে। তবে বিস্তারিত কিছু জানায়নি পুলিশ। এর আগে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, কিউবেক সিটি ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের ভেতরে অন্তত তিনজন বন্দুকধারী প্রবেশ করেছিল। গুলিতে কত লোক আহত হয়েছেন, তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। গুলির ঘটনার পর মসজিদ এলাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করে পুলিশ। সোশ্যাল মিডিয়াতেও ঘটনা পরবর্তী ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে অনেক জরুরি যান ইসলামিক সেন্টারের সামনে অবস্থান করছে। গত বছর জুন মাসে ইসলামিক সেন্টারের এই মসজিটিতে একটি উপহার বক্স আসে যেখানে শুকরের মাথা ভরা ছিল এবং একটি ছোট নোট ছিল যেখানে লেখা "খাবার উপভোগ করো"। অথচ মুসলিমরা শোকরের মাংস খায় না। আরও পড়ুন: ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসন অ���ড় শরণার্থীরা কানাডায় স্বাগত: জাস্টিন ট্রুডো বাংলাদেশে কেন বেশি জনপ্রিয় ভারতের বাংলা চ্যানেল ইসলামিক সেন্টারে আসা উপহার বক্স যেখানে 'শুকরের মাংস' ভরা ছিল কানাডার কুইবেক সিটির একটি মসজিদে বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ৬ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। আহত হয়েছেন আরও ৮ জন। +text: তারপর থেকে স্বয়ংক্রিয় এই গাড়ি থেকে ছবি তুলে পাঠানো হচ্ছে পৃথিবীতে। নাসার মহাকাশযান যেখানে অবতরণ করেছে সেই জায়গার নাম জ্যাযেরো গহ্বর। এটি এই গ্রহের ৪৯ কিলোমিটার ব্যসের একটি বিশাল গর্ত। এখানে দেখছেন রোভার পার্সিভিয়ারেন্স থেকে পাঠানো কিছু নির্বাচিত ছবি। নাসার মঙ্গল গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব, গ্রহের গঠন প্রকৃতি এবং তার জলবায়ূর ইতিহাস সম্পর্কে গবেষণা চালাচ্ছে। একই সাথে তারা মঙ্গল থেকে পাথরও সংগ্রহ করছে। মঙ্গলের চারিদিকে ঘুরছে নাসার যে মহাকাশযান সেখানে থেকে হাই রেজোলুশন ইমেজিং এক্সপেরিমেন্ট ক্যামেরা দিয়ে তোলা প্রথম ছবিতে দেখা যাচ্ছে রোভার পার্সিভিয়ারেন্স মঙ্গলের বুকে চড়ে বেড়াচ্ছে। অবতরণের পর পার্সিভিয়ারেন্সের নীচের দিকে লাগানো ক্যামেরা থেকে তোলা প্রথম উচ্চমানের রঙীন ছবি। মঙ্গলের বুকে নামার ছয় দিন পর তোলা ছবিতে পার্সিভিয়ারেন্সকে দেখা যাচ্ছে। রোভারটির দুই পাশে সাদা জায়গা দুটি রকেট নামার পর তার গ্যাস থেকে তৈরি হয়েছে। মঙ্গলের ভূপ্রকৃতি ও পরিবেশ সংক্রান্ত গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বহন করে নিয়ে যাচ্ছে পার্সিভিয়ারেন্স। যে ক্যামেরা দিয়ে এই ছবিটি তোলা হয়েছে সেটি পার্সিভিয়ারেন্সের একটি মাস্তুলের ওপর বসানো। এই ক্যামেরা দিয়ে দূর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে গাড়িটিকে চালানো যায়। পার্সিভিয়ারেন্সের নিয়ন্ত্রণ ডেক। এখানে পিক্সল বলে একটি যন্ত্র দেখা যাচ্ছে। এটি একটি যান্ত্রিক হাত। এই হাত ব্যবহার করে বিভিন্ন বস্তুর রাসায়নিক উপাদান সম্পর্কে জানা যাবে। পিক্সল-এর সাথে একটি ক্যামেরাও লাগানো আছে যা দিয়ে মাটি ও পাথরের ক্লোজ-আপ ছবি নেয়া সম্ভব। এটি মঙ্গল গ্রহের প্রথম প্যানোরামিক ছবি। পার্সিভিয়ারেন্সের চারপাশের দৃশ্য এতে ফুটে উঠেছে। রোভারের দুটি ম্যাস্টক্যাম-জেড ক্যামেরা দিয়ে ৩৬০ ডিগ্রির এই ছবিটি তোলা হয়েছে। মোট ১৪২টি ছবি একসাথে জুড়ে এই প্যানোরামিক ছবি তৈরি করা হয়েছে। এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে বাতাসের ঘর্ষণে ক্ষয়ে যাওয়া একটি পাথর। এই পাথরটির নাম দেয়া হয়েছে 'হারবার সিল' - সৈকতে রোদ পোহানো সামুদ্রিক সীল। জ্যাযেরো গহ্বর, যেখানে পার্সিভিয়ারেন্স অবতরণ করেছে, তার চারপাশের উঁচু জায়গা। এটি বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরে। পার্সিভিয়ারেন্সের ম্যাস্টক্যাম-জেড এ দুটি ক্যামেরা রয়েছে। বাঁ দিকের ক্যামেরা দিয়ে এই ছবিটি তোলা হয়েছে। এই দুটি ক্যামেরা এক সাথে কাজ করে এবং মানুষের চোখের মতো কাজ করে। কয়েক দিন আগে তোলা মঙ্গল গ্রহের ভূপৃষ্ঠের ছবি। ম্যাস্টক্যাম-জেড ক্যামেরা দিয়ে তোলা আরেকটি ছবি। মনে করা হচ্ছে এটি একটি প্রাচীন বদ্বীপের একাংশ। এখানে কয়েকটি পরতে মাটি তৈরি হয়েছে। মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতে নাসার বিজ্ঞানীরা এখানেই গবেষণা চালাবেন। রোভার পর্সিভিয়ারেন্সের অবতরণের ছবি। এখানে কয়েকটি নায়লনের রশিতে বেঁধে পার্সিাভিয়ারেন্সকে মঙ্গলের বুকে নামানো হচ্ছে। গাড়িটির চাকা মাটি স্পর্শ করার সাথে সাথে রশিগুলো খুলে নেয়া হয়। পার্সিভিয়ারেন্সের অবতরণের সময়কার ছবি। ভূমি থেকে ১১ কি.মি. ওপরে থাকতেই মহাকাশযানের সুপারসোনিক প্যারাশুট খুলে যায়, যার ফলে ধীর গতিতে মহাকাশযানটি অবতরণ করতে পারে। মাটি ষ্পর্শ করার আগে পার্সিভিয়ারেন্সকে বহণকারী রকেট থেকে তৈরি গ্যাসের ধাক্কায় মঙ্গলের ধুলো মাটি সরে যাচ্ছে। জ্যাযেরো গহ্বরের আরেকটি ছবি। এটি তোলা হয় পার্সিভিয়ারেন্সের অবতরণের আগে। এই ছবির কেন্দ্র থেকে একটু বাঁয়ে এক জায়গায় রোভারটি অবতরণ করে। ডানপাশের উঁচু জায়গাটিকে মনে করা হচ্ছে একটি নদীর বদ্বীপের ভগ্নাংশ। ধারণা করা হয়, এক সময় এখানে একটি নদী ছিল, যার পানি জমা হতো ঐ গহ্বরে। পার্সিভিয়ারেন্স এখান থেকে মাটি ও পাথরের নমুনা সংগ্রহ করে কাঁচের টিউবে ভরে রাখবে। পরে কোনো এক সময় এই নমুনা বিশ্লেষণের জন্য পাঠানো হবে পৃথিবীতে। পার্সিভিয়ারেন্স কাজ করবে মঙ্গলগ্রহের সময়ে হিসেব অনুযায়ী এক বছর, পৃথিবীর সময়ে হিসেবে যা প্রায় দু্'‌বছর। পৃথিবী থেকে যাত্রা শুরু করে সাত মাস পর মার্কিন মহাকাশ সংস্থার তৈরি গাড়ি পার্সিভিয়ারেন্স গত ১৮ই ফেব্রুয়ারি মঙ্গল গ্রহে পৌঁছায়। +text: পুরুষদের প্রোস্টেট গ্রন্থির ক্যান্সারকেই বলা হয় প্রোস্টেট ক্যান্সার । এখন পর্যন্ত প্রোস্টেট ক্যানসারের কারণ তেমনভাবে জানা যায়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা ব���ছেন - মূলত কয়েকটি বিষয় এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম একটা কারণ হলো, বয়স। অর্থাৎ ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। এছাড়াও পারিবারিক ইতিহাস বা জেনেটিক কারণেও এই ক্যান্সারে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন। এটিকে কেন 'নীরব ঘাতক' বলা হয়? এর লক্ষণগুলো কী? এটি কতটা ভয়ংকর আর ঠেকানোর উপায় কী- সেগুলো দেখুন ভিডিওতে। ক্যান্সার নিয়ে বিবিসি বাংলার ধারাবাহিক আয়োজনের পঞ্চম পর্ব এটি। ভিডিওগুলো দেখতে পাবেন বিবিসি বাংলার ইউটিউব চ্যানেলেও। আরো দেখতে পারেন: জরায়ুমুখ ক্যান্সারের ঝুঁকি, লক্ষণ ও চিকিৎসা কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি, লক্ষণ ও চিকিৎসা নারী-পুরুষ সবারই হতে পারে স্তন ক্যান্সার, বুঝবেন কীভাবে? ওভারিয়ান বা ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার সম্পর্কে যা জানা জরুরী বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে যে ক্যান্সার বিশ্বজুড়ে যেসব ক্যান্সারে মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন তার মধ্যে আছে প্রোস্টেট ক্যান্সার। +text: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প। ৭৪ বছর বয়সী এই প্রেসিডেন্ট এবং ৫০ বছর বয়সী ফার্স্ট লেডি করোনাভাইরাসের ঝুঁকির মধ্যে আছেন। তবে মিঃ ট্রাম্পের চিকিৎসক শন কনলি একটি বিবৃতিতে বলেছেন যে, প্রেসিডেন্ট এবং ফার্স্ট লেডি "এই সময়ে দুজনই ভাল আছেন, এবং তারা সেরে না ওঠা পর্যন্ত হোয়াইট হাউসের ঘরেই থাকবেন"। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "আমি আশা করি যে প্রেসিডেন্ট এই সময়ের মধ্যে বিনা বাধায় তাঁর দায়িত্ব পালন করে যাবেন এবং আমি সব খবর আপনাদের জানাবো।" ট্রাম্পের নিকটতম সহযোগীদের একজন করোনাভাইরাস পজিটিভ হওয়ার পরে বিষয়টি সামনে আসে। ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় বলেছেন যে, তার একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী হোপ হিকস স্বাস্থ্য পরীক্ষায় করোনাভাইরাস পজিটিভ হওয়ায় তিনি এবং ফার্স্টলেডি মেলানিয়া ট্রাম্প কোয়ারেন্টিনে আছেন। প্রেসিডেন্টের নিকটতম কর্মকর্তাদের মধ্যে ৩১ বছর বয়সী এই উপদেষ্টা এখন অবধি প্রথম কেউ যার করোনাভাইরাস পজিটিভ হয়েছে। তিনি এই সপ্তাহের শুরুতে ওহাইওতে ট্রাম্পের সাথে ডেমোক্র্যাটিক প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল টিভি বিতর্কে যোগ দিতে এয়ার ফোর্স ওয়ানে ট্রাম্পের সঙ্গে ভ্রমণ করেছিলেন। মিস. হিকস কোনও মাস্ক ছাড়াই ক্লিভল্যান্ডে মঙ্গলবার প্রেসিডেন্টের জেট থেকে নেমেছিলেন, এমন ছবি প্রকাশ হয়েছে। বিতর্কে অংশ নেওয়া মিঃ ট্রাম্পের পরিবারের সদস্যদের কয়েকজনের মুখেও কোন মাস্ক দেখা যায়নি। বুধবার মিনেসোটাতে এক সমাবেশ করার সময় হোপ হিকস প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার মেরিন ওয়ানে প্রেসিডেন্টের আরও কাছাকাছি ছিলেন। আরও পড়তে পারেন: করোনাভাইরাস: অবশেষে মাস্ক পরলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার মাস্ক নিয়ে সুর পাল্টালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প হোপ হিকস হোয়াইট হাউস যোগাযোগ পরিচালক হিসাবে কাজ করেছিলেন। মিঃ ট্রাম্প কী বলেছেন? মি. ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় বলেছেন, আজ রাতে তিনি এবং ফার্স্টলেডি কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়েছেন। আমরা আমাদের কোয়ারেন্টিন এবং সেরে ওঠার প্রক্রিয়া শুরু করবো। আমরা একসাথে এর থেকে বেরিয়ে আসবো।" এছাড়া বৃহস্পতিবার রাতে তিনি টুইট করেছিলেন: "হোপ হিকস, যিনি কোন বিরতি না নিয়ে এত কঠোর পরিশ্রম করে চলেছেন, তিনিও স্বাস্থ্য পরীক্ষায় কোভিড-১৯ পজিটিভ হলেন। ভয়ঙ্কর!" "ফার্স্ট লেডি এবং আমি আমাদের পরীক্ষার ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছি, এই সময়ের মধ্যে, আমরা কোয়ারেন্টিনে থাকার প্রক্রিয়া শুরু করবো!" প্রেসিডেন্ট কোয়ারেন্টিনে যাওয়ায় ফ্লোরিডার মিয়ামিতে ১৫ই অক্টোবর নির্ধারিত দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট বিতর্কের ব্যবস্থাপনায় কেমন প্রভাব পড়বে তা এখনও পরিষ্কার নয়। বৃহস্পতিবার রাতে ফক্স নিউজের সঞ্চালক শন হ্যানিটির সাথে একটি ফোন কলে মিঃ ট্রাম্প বলেছিলেন যে তিনি এবং মিসেস ট্রাম্প "হোপের সাথে অনেকটা সময় কাটিয়েছেন"। "সুতরাং আমরা দেখব, কী হয়," প্রেসিডেন্ট বলেন, মিস হিকস প্রায়শই মাস্ক পরতেন তারপরও তিনি করোনাভাইরাস পজিটিভ হয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক সময় মাস্ক পরার বিরোধী ছিলেন। পরে অবশ্য তিনি নিজেই বলেন যে, ''মাস্ক পড়া খুব ভালো একটা ব্যাপার,''। মিঃ ট্রাম্প বেশিরভাগ সময় মাস্ক পরার বিরোধী ছিলেন এবং সরকারী কাজের সময় প্রায়শই তার সহযোগী বা অন্যদের সাথে সামাজিকভাবে দূরত্ব মানতেন না বলে ছবিতে দেখা গেছে। ব্লুমবার্গ নিউজ জানিয়েছে, মিস হিকসের শরীরে এই রোগের লক্ষণগুলো দেখা দিতে শুরু করলে মিনেসোটা থেকে ফেরার পথে এয়ার ফোর্স ওয়ানে তাকে কোয়ারেন্টিন করে রাখা হয়েছিল। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে দ্য হিল পলিটিক্যাল নিউজ আউটলেট জানিয়েছে য��, হোপ হিকসের সংস্পর্শে কারা কারা এসেছিলেন সেটা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এবং এ সংক্রান্ত উপযুক্ত নোটিফিকেশন এবং সুপারিশ প্রস্তুত করা হচ্ছে"। বৃহস্পতিবার রাতে ফক্স নিউজের সঞ্চালক শন হ্যানিটির সাথে একটি ফোন কলে মিঃ ট্রাম্প বলেছিলেন যে তিনি এবং মিসেস ট্রাম্প "হোপের সাথে অনেকটা সময় কাটিয়েছেন"। "সুতরাং আমরা দেখব, কী হয়," প্রেসিডেন্ট বলেন, মিস হিকস প্রায়শই মাস্ক পরতেন তারপরও তিনি করোনাভাইরাস পজিটিভ হয়েছেন। মিঃ ট্রাম্প বেশিরভাগ সময় মাস্ক পরার বিরোধী ছিলেন এবং সরকারী কাজের সময় প্রায়শই তার সহযোগী বা অন্যদের সাথে সামাজিকভাবে দূরত্ব মানতেন না বলে ছবিতে দেখা গেছে। ব্লুমবার্গ নিউজ জানিয়েছে, মিস হিকসের শরীরে এই রোগের লক্ষণগুলো দেখা দিতে শুরু করলে মিনেসোটা থেকে ফেরার পথে এয়ার ফোর্স ওয়ানে তাকে কোয়ারেন্টিন করে রাখা হয়েছিল। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে দ্য হিল পলিটিক্যাল নিউজ আউটলেট জানিয়েছে যে, হোপ হিকসের সংস্পর্শে কারা কারা এসেছিলেন সেটা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এবং এ সংক্রান্ত উপযুক্ত নোটিফিকেশন এবং সুপারিশ প্রস্তুত করা হচ্ছে"। যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ কোভিড -১৯ এ আক্রান্ত হয়েছে। হোয়াইট হাউসে আর কেউ করোনাভাইরাস পজিটিভ হয়েছেন? মিস হিকস হোয়াইট হাউস সর্বশেষ কেউ যিনি কোভিড -১৯ পজিটিভ হয়েছেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের প্রেস সচিব কেটি মিলার মে মাসে করোনাভাইরাস পজিটিভ হন। এখন তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। একই মাসে, ইউএস নেভির একজন সদস্য যিনি মিঃ ট্রাম্পের ব্যক্তিগত ভ্যালেটগুলোর একজন হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন, তিনিও করোনাভাইরাস পজিটিভ হন। তবে হোয়াইট হাউস জানিয়েছিল যে প্রেসিডেন্ট বা ভাইস প্রেসিডেন্টের কেউই তাদের কারণে ঝুঁকির মুখে পড়েননি। জাতীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা রবার্ট ও'ব্রায়ান, সিক্রেট সার্ভিসের বেশ কয়েকজন এজেন্ট, একজন মেরিন ওয়ান পাইলট এবং হোয়াইট হাউসের ক্যাফেটেরিয়া কর্মীও স্বাস্থ্যপরীক্ষায় করোনাভাইরাস পজিটিভ হয়েছিলেন। মিস হিকস হোয়াইট হাউসের যোগাযোগ পরিচালক হওয়ার এর আগে মিঃ ট্রাম্পের প্রার্থিতার সময় নির্বাচনী প্রচার প্রচারণার মুখপাত্র ছিলেন। তিনি ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার আগে, রুপার্ট মারডকের ফক্স নিউজের প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তার চাকরি থেকে ��০১৮ সালের মার্চ মাসে এ পদত্যাগ করেছিলেন। করোনাভাইরাস ৭২ লাখেরও বেশি আমেরিকান সংক্রামিত হয়েছেন, তাদের মধ্যে দুই লাখেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। হোয়াইট হাউস সহায়তাকারী যারা প্রেসিডেন্টের সংস্পর্শে আসেন, প্রতিদিন তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। হোপ হিকস প্রায়শই অন্যান্য সহযোগীদের সাথে প্রেসিডেন্টের সাথে ভ্রমণ করতেন। হোপ হিকস কে? •যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাট অঙ্গরাজ্যের গ্রিনউইচে বেড়ে উঠেছেন। •কৈশোরে মডেলিং শুরু করেন একবার রাল্ফ লরেনের বিজ্ঞাপনে তাকে দেখা গিয়েছিল। •আগে একটি জনসংযোগ সংস্থার হয়ে কাজ করতেন। ওই প্রতিষ্ঠানটি ইভানকা ট্রাম্পের ফ্যাশন ব্যবসা এবং ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের ব্র্যান্ড পরিচালনার কাজ করতো। •২০১৪ সালে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনে যোগ দেন এবং রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বছর পরে তাকে তার প্রচার দলে নিয়ে আসেন। •মিঃ ট্রাম্প তাকে "হোপস্টার" নামে ডাকতেন, তিনি তাঁর অন্যতম বিশ্বস্ত সহায়ক এবং এমন কিছু লোকের মধ্যে তিনি আছেন যারা ট্রাম্পকে তার মতামত পরিবর্তন করতে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন যে তিনি এবং ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প করোনাভাইরাস পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন এবং তারা দুজন এখন কোয়ারেন্টিনে আছেন। মি. ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। +text: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস এবং সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন। আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা এবং মন্ত্রী ড: আব্দুর রাজ্জাক বিবিসিকে বলেছেন, ঘটনাগুলো তাদের জন্য ভাল লক্ষণ নয়। তিনি উল্লেখ করেছেন, তাদের নেতৃত্ব বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে। দলটির তৃণমূলের নেতা কর্মীদের অনেকে মনে করেন, ব্যক্তিস্বার্থ থেকেই এ ধরনের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসছে এবং এ জন্য মাঠপর্যায়ে তাদের পড়তে হচ্ছে নানা প্রশ্নের মুখে। 'পালাবার পথ খুঁজে পাবেন না অনেক এমপি' নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী আবদুল কাদের মির্জার যে বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়, তিনি তাতে বলেছিলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিন-চারটি আসন বাদে তাদের অন্য এমপিরা পালানোর পথ খুঁজে পাবে না। মি: মির্জার বক্তব্যে শুধু যে নিজ দলের এমপিদেরই সমালোচনা ছিল তাই নয��। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের ছোট ভাই । তাই তার সেই বক্তব্য ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। আবদুল কাদের মির্জা এর মাঝেই রাজধানীতে ঘটে আরেক ঘটনা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস এবং সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন একে অপরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে মামলা করারও হুমকি দেন। আরও পড়ুনঃ ভাইরাল ভিডিও নিয়ে যা বলছেন নোয়াখালীর সেই আ. লীগ নেতা তাপসকে নিয়ে বক্তব্য দেয়ায় সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা এ ধরনের পরিস্থিতি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরেই নানা আলোচনা চলছে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং মন্ত্রী ড: আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, আবদুল কাদের মির্জার বক্তব্যকে তাদের দল পৌরসভা পর্যায়ের একজন নেতার 'ব্যক্তিগত মতামত' হিসাবে দেখছে। 'ভাল লক্ষণ নয়, তাদের নিবৃত্ত করা হবে' তবে তিনি বলেন, ঢাকার বর্তমান এবং সাবেক মেয়রের পাল্টাপাল্টি দুর্নীতির অভিযোগ এবং প্রকাশ্য দ্বন্দ্বকে তারা অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছেন। "ঢাকা কিন্তু বাংলাদেশের রাজধানী। সবকিছুই পরিচালিত হয় ঢাকাকে কেন্দ্র করে। কাজেই ঢাকা শহরের মেয়র এবং সাবেক মেয়রের দ্বন্দ্ব। আমরা এটা খুবই সিরিয়াসলি দেখছি এবং চিন্তা করছি। এটা আমাদের জন্য ভাল লক্ষণ নয়, দল অবশ্যই গুরুত্বসহকারে নিয়েছে" - বলেন ড: রাজ্জাক। তিনি আরও বলেছেন, "নিশ্চয়ই তাদেরকে নিবৃত্ত করা হবে। তারা যে কথাই বলুক না কেন, তাতে যেন দলীয় শৃঙ্খলা মানা হয়, যাতে দল এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন না হয়।" আরো পড়তে পারেন: ঢাকা দক্ষিণের সাবেক ও বর্তমান দুই মেয়রের বিবাদ, কী বলছে আওয়ামী লীগ এক এগারোর সরকারের কথিত সংস্কার কতটুকু অর্জিত হয়েছে আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং কৃষি মন্ত্রী ড: আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগের সিনিয়র আরও একাধিক নেতা জানিয়েছেন, তাদের দল থেকে ঢাকা দক্ষিণের বর্তমান ও সাবেক মেয়র দু'জনকেই দ্বন্দ্বে আর না জড়াতে বলা হয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে দেখা গেছে, সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে মানহানির দু'টি মামলা করা হয়। মঙ্গলবার শেখ ফজলে নূর তাপস সেই মামলা করার ব্যাপারে তার সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, অতি উৎসাহী দু'জন আইনজীবী মামলা দু'টি করেছে। তিনি তাদের মামলা প্রত্যাহারের আহবান জানিয়েছেন। সাঈদ খোকন বিবিসিকে বলেছেন, মামলা যেহেতু প্রত্যাহার করা হচ্ছে, সমস্যার কিছুটা সমাধান হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন। তবে নির্বাচন এবং নোয়াখালী অঞ্চলের আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়ে বক্তব্য দেয়া অব্যাহত রেখে আলোচনায় থাকা আবদুল কাদের মির্জা জানিয়েছেন, তাকে দল থেকে কিছু বলা হয়নি। তিনি তার 'সত্য' বক্তব্য অব্যাহত রাখবেন। 'নানা প্রশ্নের মুখোমুখি' স্থানীয় নেতারা তবে ঘটনাগুলো আওয়ামী লীগকে বিব্রত করছে বলে মনে করেন দলটির তৃণমূলের নেতারা মনে করেন। উত্তরের একটি বিভাগীয় শহর রাজশাহী থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একজন নেত্রী সৈয়দা শামসুন্নাহার মুক্তি বলেছেন, মাঠে তারা নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছেন। "ঢাকার বর্তমান এবং সাবেক মেয়র দু'জনই কিন্তু প্রভাবশালী। ফলে এখন যে দ্বন্দ্ব চরছে, এগুলো আমাদের মাঠে বিব্রত করে। প্রতিপক্ষরা আমাদের হেয় করে এবং অনেক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়।" দেশের আরও কয়েকটি জেলা যেমন বগুড়া, যশোর, সিলেট, চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা কর্মীর সাথে কথা বললে তারাও বলেছেন, ব্যক্তিস্বার্থ থেকে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসছে এবং এই পরিস্থিতি তাদের দল ও সরকারের ভাবমূর্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। দলটির মধ্যম সারির নেতাদেরও অনেকে পরিস্থিতিকে একইভাবে দেখছেন বলে মনে হয়েছে। তবে সাবেক মন্ত্রী আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেছেন, যে ঘটনাগুলো প্রকাশ্যে এসেছে, সেগুলো দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা হবে। একইসাথে তিনি বলেছেন,ঘটনাগুলোকে বড় কোন বিষয় হিসাবে দেখারও কিছু নেই বলে তিনি মনে করেন। "দীর্ঘদিনের সংসারেও ছোটখাট রাগ-অভিমান বা ভুল-ভ্রান্তি থাকতেই পারে। কিন্তু প্রকাশ্যে এসে পড়লেই যে সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেছে, তা নয়। তবে এটা অবশ্যই নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন আছে।" "কারণ নিজেরা কাদা ছোঁড়াছুড়ি করলে সেটা দলগত বা ব্যক্তিগতভাবে বলেন, কোন দিক থেকেই ভাল হবে না" বলে তিনি মন্তব্য করেন। এদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা বলেছেন, তাদের সরকারের টানা ১২ বছর হয়েছে এবং এই লম্বা সময়ে কিছু 'পাওয়া না পাওয়ার' প্রশ্ন এবং বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যক্তিস্বার্থের কারণে দ্বন্দ্ব তৈরি হতে পারে। এগুলোর বহিপ্রকাশ বিভিন্ন জায়গায় ঘটলে তখন তা আরও ক্ষতিকর হতে পারে - এমন আলোচনা তাদের মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশে ক্ষমতা���ীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জার বিভিন্ন বক্তব্য নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই ঢাকা দক্ষিণের বর্তমান এবং সাবেক মেয়রের দ্বন্দ্ব যেভাবে প্রকাশ্য হয়ে পড়েছে, তা দল এবং সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে বলে দলটির নেতাদের অনেকেই বলছেন। +text: সিলেটের আদালতে উপচে পরা ভিড় সিলেটে ১৩ বছরের সামিউল আলম রাজনকে পিটিয়ে হত্যার জন্যে চারজনের মৃত্যুদণ্ড আর খুলনায় মলদ্বার দিয়ে হাওয়া ঢুকিয়ে ১৩ বছরের রাকিব হাওলাদারকে হত্যার দায়ে দু’জনকে ফাঁসির দণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ বছরের জুলাই এবং আগস্ট মাসে পর পর এই দুটো শিশু হত্যা নিয়ে জনমনে ব্যাপক উদ্বেগ এবং ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। জুলাই ও আগস্ট মাসের এই দুটো স্পর্শকাতর হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়ে গেলো ৮ই নভেম্বরের মধ্যেই। এই দুটো মামলার বিচারের জন্যে আদালতের জন্যে সময় লেগেছে মাত্র তিন চার মাস, যথাক্রমে ১৯ ও ১১টি কার্যদিবস। কোনো হত্যাকাণ্ডের এতো দ্রুত বিচারের নজির বাংলাদেশে নেই বললে চলে। আইনজীবীরা বলছেন, মামলা দুটোকে ঘিরে জনগণের আগ্রহ ও প্রচণ্ড ক্ষোভের কারণে এতো তাড়াতাড়ি এই দুটো হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে। রাজন হত্যার বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ খুলনা ও সিলেটে এই রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আদালতে প্রচুর মানুষ ভিড় করেছিলো। আসামীদের যখন নিয়ে আসা হয় তখন তারা তাদের বিরুদ্ধে শ্লোগানও দিয়েছে। এই আগ্রহের কারণে দ্রুত বিচারের জন্যে একটা চাপও তৈরি হয়েছিলো আদালতের ওপর। অন্যদিকে, সরকারও মামলা দুটোকে গুরুত্বের সাথে নিয়েছে। এতো অল্প সময়ের মধ্যে তদন্ত, অভিযোগ গঠন ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের কাজ শেষ করেছে। অবশ্য এই দুটো মামলাতেই আসামী পক্ষ উচ্চতর আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন। রাজন হত্যা সিলেটে শিশু রাজনের বাবা মা তাদের সন্তানের হত্যাকারীদের ফাঁসির রায় যতো দ্রুত সম্ভব কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন। খুব দ্রুত রায় ঘোষণা করায় তারা সন্তোষ প্রকাশ করেন। সামিউল আলম রাজন শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনকে গত জুলাই মাসে একটি খুঁটির সাথে বেঁধে পেটানোর পর তার মৃত্যু হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের মাত্র চার মাসের মাথায়, আদালতের মাত্র ১৯ কার্যদিবস শেষে এই মামলার রায় হলো। সিলেটের মহানগর দায়রা জজ বিচারক আকবর হোসেন মৃধা তার রায়ে প্রধান আসামী কামরুল ইসলামসহ চারজনকে মৃত��যুদণ্ড দিয়েছে। রায়ের পর রাজনের বাবা আজিজুর রহমান বলেছেন, “ফাঁসির রায় দ্রুত কার্যকর হলেই রাজনের আত্মা শান্তি পাবে।” রাজনকে পেটানোর ভিডিওটি ফেসবুকসহ ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশে বিদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। রাকিব হত্যা খুলনায় যে শিশু রাকিব হাওলাদারকে তার মলদ্বার দিয়ে হাওয়া ঢুকিয়ে হত্যা করা হয়েছিলো, তার পরিবারের সদস্যরা এই রায়ে খুশি হলেও একজন আসামীকে বেকসুর খালাস দেওয়ায় তারা হতাশা প্রকাশ করেছেন। খুলনা মহানগর দায়রা জজ দিলরুবা সুলতানা এই মামলায় দু’জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। নিহত রাকিব হাওলাদার তারা হলেন রাকিব যে কারখানায় কাজ করতো সেই শরীফ মোটর্সের মালিক ওমর শরীফ এবং তার সহযোগী মিন্টু খান। শরীফের মা বিউটি বেগমকে খালাস দেওয়া হয়েছে। তাকে খালাস দেওয়ায় রাকিবের পরিবারের সদস্যরা আদালতে বিক্ষোভও করেছেন। রায় ঘোষণার সময় বিচারক বলেন, “কমপ্রেসর মেশিন দিয়ে কারো পেটে হাওয়া দিয়ে কাউকে হত্যা করার ঘটনা এই পৃথিবীতে বিরল।” বেশি মজুরির আশায় সে শরীফ মোটর্স থেকে বেরিয়ে অন্য একটি কারখানায় কাজ নিলে তাকে এভাবে হত্যা করা হয়। রাকিবকে হত্যা করা হয় ৩রা আগস্ট, তারপর মাত্র ১১ কার্যদিবসে এই বিচার কাজ শেষ করা হয়েছে। বাংলাদেশে শিশু হত্যার দুটো চাঞ্চল্যকর ঘটনার মামলায় মোট ছয় জনের ফাঁসির রায় হয়েছে। +text: বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় দাবি আদায়ের জন্য পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। ফাইল ফটো বৈঠক শেষে রাত একটার পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ জানিয়েছে আজ থেকে সারাদেশে পণ্য পরিবহন স্বাভাবিক নিয়মে হবে। কী দাবি মেনে নিয়েছে সরকার? বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার বাসভবনে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতাদের সঙ্গে রাত নয়টা থেকে টানা প্রায় চার ঘণ্টা বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনানুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, বৈধ লাইসেন্স সংগ্রহের জন্য চালকদের ২০২০ সালের ৩০শে জুন পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। "যে লাইসেন্স দিয়ে তারা গাড়ি চালাচ্ছিলেন, সেই লাইসেন্সটি বহাল থাকবে। কিন্তু আগামী ৩০শে জুনের মধ্যে তারা তাদের সঠিক লাইসেন্সটি বিআরটিএ'র মাধ্যমে গ্রহণ করবেন, সে�� ভাবে তারা কাজ শুরু করবেন---এই প্রতিশ্রুতিতে আমরা একমত হয়ে সেই দাবিটা মেনে নিয়েছি।" "এছাড়া বিভিন্ন প্রকার গাড়ির ফিটনেস কাগজপত্র হালনাগাদ করতে যা সরকারি ফি ছিল তার প্রায় চারগুণ ফাইনের (জরিমানা) পরিমাণ ছিল। তারা সময়মত সেটা পরিশোধ করতে পারেনি বলেই এই ফাইন হয়েছে। আমরা বলেছি, মাননীয় যোগাযোগ মন্ত্রী সেগুলো পরীক্ষানিরীক্ষা করে সেইগুলো মেনে নেবেন বলে আমরা তাদের আশ্বাস দিয়েছি।" তিনি আরো বলেন, ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের যে নয় দফা দাবি, তার মধ্যে যেগুলো আইন সংশোধনের ব্যাপার সেগুলো যোগাযোগ মন্ত্রীর কাছে সুপারিশসহ পাঠানো হবে। আরো পড়তে পারেন: 'কর্মবিরতি' করে কি আইন ভাঙছেন পরিবহন শ্রমিকরা? পরিবহন ধর্মঘট: শ্রমিকদের পক্ষে দুই সাবেক মন্ত্রী সড়ক পরিবহন আইনে কী আছে, পক্ষে বিপক্ষে যতো কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান "যাতে করে তিনি পরবর্তী ব্যবস্থা, আইন মন্ত্রণালয়ে যেভাবে যেভাবে করার সেভাবে তিনি প্রক্রিয়ায় যেতে পারেন।" স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, লাইসেন্স যথাযথ করার জন্য চালকদের সময় দেয়া হলেও অবৈধ লাইসেন্সের মাধ্যমে কাউকে গাড়ি চালাতে দেয়া হবে না। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেই জায়গায় কঠিন অবস্থানে থাকবে বলে তিনি জানান। মালিক-শ্রমিকদের জোট কী বলছে? বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক রুস্তম আলী খান বিবিসিকে জানিয়েছেন, তাদের আন্দোলনের মুখে সরকার দাবি মেনে নেয়ায় তারা সন্তুষ্ট। "মূলত ড্রাইভারদের যে জামিন অযোগ্য মামলা হবে, ওইগুলা আইনের ব্যাপার, ওটা ঠিক করতে সময় লাগবে। কিন্তু ওনারা (সরকার) কথা দিছে, মন্ত্রণালয় সুপারিশ পাঠিয়ে ওটা ঠিক করে দেবে।" "এখন যেসব বিষয় নিয়ে সমস্যা আছে, আমরা আলোচনা করেছি তাতে বিআরটিএ'র সঙ্গে আলাদা আলাদা বসতে হবে। সেখানেও কিছু জটিলতা আছে, সেগুলো আলাপ আলোচনা করে ঠিক করতে হবে। এজন্য বিআরটিএ চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেয়া হইছে।" মিঃ খান বলেন, "পুলিশের সঙ্গেও কিছু কিছু সমস্যা আছে, অ্যাডিশনাল আইজি হাইওয়েকে দায়িত্ব দেয়া হইছে যেন অযথা কোন হয়রানি না হয়, হইলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে এমন আশ্বাস আমাদের দেয়া হইছে।" এখন সরকার তাদের দাবি মেনে নেবার পর তারা সড়ক পরিবহন আইন মেনে চলবেন কি না, এ প্রশ্নের জবাবে মিঃ খান বলেছেন, "আইন তো মেনে ��লতেই হবে। কিন্তু আমাদের ওপর যে আইন দেয়া হইছে, কিছু কিছু ধারায় এমন জরিমানা ধার্য করছে যে সেটা গাড়ি চালাইয়া দেয়া সম্ভব না, জায়গা (জমি) বেইচা দেয়া লাগে এমন অবস্থা।" "এই সমস্যা ও অন্যান্য সমস্যা সমাধান করা হবে বলে আমাদের আশ্বাস দেয়া হইছে, আর আমরা সেই আশ্বাসের প্রেক্ষাপটে কর্মসূচী প্রত্যাহার করছি।" গত ১৮ই নভেম্বর সরকার নতুন সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ কার্যকরের ঘোষণা দেবার পর থেকে তা সংশোধনের দাবি তুলে সেদিন থেকেই দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় পরিবহন ধর্মঘট ও কর্মবিরতি শুরু হয়। ১৯শে নভেম্বর ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ পরদিন থেকে অর্থাৎ ২০শে নভেম্বর থেকে দেশব্যাপী অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দেন। পণ্য পরিবহনের সঙ্গে সঙ্গে যাত্রী পরিবহনও ব্যাহত হয় বিভিন্ন জেলায়, যে কারণে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: সংস্কৃত পড়াতে মুসলিম শিক্ষক নিয়োগের পর বিক্ষোভ লবণ কিনতে ক্রেতারা মরিয়া হলো কেন ৯ বছর বয়সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি ক্রেডিট কার্ড: গ্রাহকরা কী করতে পারেন, কী পারেন না বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের আশ্বাসে দেশব্যাপী কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। +text: ভারতের ২০ কোটি সংখ্যালঘু মুসলমানকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীতে পরিণত করার লক্ষ্যেই ঐ আইনটি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যের মন্ত্রী শ্রীকান্ত শর্মা সাংবাদিকদের বলেছেন, রাজ্যের ৮০টি জেলার মধ্যে ২১টি জেলা থেকে তারা ৩২,০০০ ব্যক্তিকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে শনাক্ত করেছেন। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ-তে প্রতিবেশী মুসলিম-প্রধান দেশগুলি থেকে আসা অমুসলিম সংখ্যালঘুদের ভারতের নাগরিকত্ব দেয়ার বিধান রয়েছে। এর বিরুদ্ধে দেশজুড়ে যে সহিংস বিক্ষোভ হয়েছে, তাতে শুধু উত্তর প্রদেশেই নিহত হয়েছে ৩০ ব্যক্তি। ভারতে ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপি বলছে, সিএএ মানুষকে নিপীড়নের হাত থেকে রক্ষা করবে। কিন্তু এর সমালোচকেরা বলে থাকেন সে দেশের ২০ কোটি সংখ্যালঘু মুসলমানকে তাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্যই 'হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা' কৌশলে ঐ আইনটি ব্যবহার করছে। সিএএ-এর বিরুদ্ধে পুরো ভারত জড়েই বিক্ষোভ হয়েছে। কিন্তু উত্তর প্রদেশে প্রতিবাদ শক্তহাতে ���মন করা হয়েছে। আরো পড়তে পারেন: ভারতে বিতর্কিত দুই আইন: বিরোধীদের ঐক্য নেই 'জীবনে প্রথম প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নেমেছি' ভারতে থাকা 'অবৈধ বাংলাদেশীদের' ফেরানো হবে? উত্তর প্রদেশে ক্ষমতাসীন দল হচ্ছে বিজেপি। বিপুল সংখ্যক মুসলমানের বাস ঐ রাজ্যে। এই আইনের বিরুদ্ধে যে বিক্ষোভ হয়েছে, তাতে অনেক মুসলমানই যোগ দিয়েছেন। এখন অভিযোগ উঠেছে, সরকার প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে মাত্রাতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করে এসব বিক্ষোভ দমন করছে। বিক্ষোভে নিহতদের মধ্যে অনেকেই মারা গেছে পুলিশের হাতে। এসব নিয়ে উদ্বেগ সত্ত্বেও মি. শর্মা বলছেন, চলতি মাসের গোড়া থেকে রাজ্যে সিএএ কার্যকর হয়েছে এবং এই আইনের আওতায় তারা অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্ত করতে শুরু করেছে। তিনি বলছেন, এই প্রক্রিয়া সবে শুরু হয়েছে, এখনও অনেক তথ্য আসছে। ভবিষ্যতে এ সম্পর্কে আরও জানা যাবে বলে তিনি জানান। বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: দরপতনে অস্থির শেয়ার বাজার, বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা আজীবন বহিষ্কার হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ ছাত্র ভারতে জনসংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তর প্রদেশে বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের প্রয়োগ শুরু হয়েছে। +text: ভারতের একটি স্কুলে 'বন্দে মাতরম' গাইছে শিক্ষার্থীরা হাইকোর্ট আজ নির্দেশ দিয়েছে, তামিলনাডুর সব স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সপ্তাহে অন্তত একবার করে বন্দে মাতরম গাইতেই হবে - আর তার পরই এই রায়ের প্রতিবাদে সরব হয়েছে দেশের বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন, যারা মনে করছে এই গানটি ইসলামবিরোধী। দেশের শাসক দল বিজেপি অবশ্য বলছে, এটি একটি জাতীয়তাবাদী চেতনার গান - এখানে ধর্মকে টেনে আনাটা দুর্ভাগ্যজনক। প্রায় ১৪০ বছর আগে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা 'বন্দে মাতরম' গানটি নিয়ে সাম্প্রদায়িক বিতর্কের বয়সও প্রায় সমান পুরনো। সমালোচকরা অনেকে বলে থাকেন, আনন্দমঠ উপন্যাসে ব্যবহৃত এই গানটি আসলে হিন্দু ধর্মীয় চেতনায় লেখা রণসঙ্গীত - ভারতের মুসলিম সমাজ এটিকে কখনওই আপন করে নিতে পারেন নি। এইচআইভি প্রতিরোধে নতুন এক রিং: নারীদের মধ্যেও পেয়েছে জনপ্রিয়তা আমাকে ৬ মাস ধরে প্রত্যেক দিন ধর্ষণ করা হতো তবে তা সত্ত্বেও ১৯৫০ সালে ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রগীতের স্বীকৃতি পায় এই বন্দে মাতরম - যদিও তাতে বিতর্ক থামেনি। এই গানটি বাংলা ভাষায় লেখা না সংস্কৃতে, তা নিয়ে হওয়া এক মামলায় আজ মাদ্রাজ হাইকোর্টের রায় সেই বিতর্কে নতুন করে ইন্ধন জুগিয়েছে। তামিলনাডুর সব স্কুল-কলেজে সোমবার বা শুক্রবার এই গানটি গাইতেই হবে, আদালতের এই রায় সামনে আসার পরই প্রতিবাদে ফেটে পড়েন অল ইন্ডিয়া ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান মৌলানা সাজিদ রশিদি। ভারতে গানটিকে জনপ্রিয় করেছেন এ আর রহমান, যিনি নিজেও একজন মুসলিম তিনি বলেন, "বন্দে মাতরমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে - কারণ প্রশ্নটা এখানে হিন্দুস্তানকে ভালবাসার নয়। বিষয়টা হল এই দ্বীন-দুনিয়ার যিনি পালনকর্তা খোদা - তাকে ছাড়া আমরা কাউকে কখনও বন্দনা করতে পারি না, পারব না।" বিরোধী কংগ্রেসের এমপি রঞ্জিতা রঞ্জনও বলেন, আদালত কাউকে দিয়ে জোর করে বন্দে মাতরম গাওয়াতে গেলে তাতে হিতে বিপরীত হবে। আদালতের এই রায় জুডিশিয়াল ওভার-অ্যাক্টিভিজম বা বিচার বিভাগীয় বাড়াবাড়ির পর্যায়ে পড়ে বলেও মন্তব্য করেন কোনও কোনও পর্যবেক্ষক। সন্ধ্যার মধ্যেই ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে ঝড়ের বেগে ছড়িয়ে পড়ে বিতর্কিত ধর্মপ্রচারক জাকির নাইকের পুরনো একটি ভিডিও ক্লিপ, যেখানে তিনি বলছেন শুধু মুসলিমরা নন - হিন্দুদেরও আসলে বন্দে মাতরম বয়কট করা উচিত। জাকির নাইককে সেখানে বলতে শোনা যায়, "বন্দে মাতরমে অন্তত তিনবার মাতৃভূমির কাছে মাথা নোয়ানোর কথা বলা আছে। এমন কী হিন্দুধর্মও কিন্তু সর্বশক্তিমান ঈশ্বর ছাড়া অন্য কারও কাছে মাথা নোয়ানোর অনুমতি দেয় না। আর মুসলিমদের তো এই গান গাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না - কারণ এটি কোরান-বিরোধী।" তবে ঘটনা হল, এই ধরনের বিতর্ক সত্ত্বেও বন্দে মাতরম গানটি আধুনিক ভারতে নতুন করে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে - যার পেছনে আসে বছর কুড়ি আগে এ আর রহমানের তৈরি করা একটি ভার্সন। এ আর রহমান নিজেই একজন তামিল মুসলিম। প্রায় ১৪০ বছর আগে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা 'বন্দে মাতরম' গানটি নিয়ে সাম্প্রদায়িক বিতর্কের বয়সও প্রায় সমান পুরনো এছাড়া গত প্রায় পঁচিশ বছর ধরে ভারতে পার্লামেন্টের প্রতিটি অধিবেশনও শুরু হয় বন্দে মাতরম দিয়ে। এই সব যুক্তি তুলে ধরেই বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলছেন, রাষ্ট্রগীতের বিরোধিতায় ইসলামকে টেনে আনাটা একেবারেই অনুচিত। তার বক্তব্য, "একশো বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্দে মাতরম হিন্দুস্তানের মর্মসঙ্গীত, হৃদয়ের গান। ১৯০৫ সালে ব্রিটিশ যখন বঙ্গভঙ্গের চেষ্টা করেছিল, তখন হিন্দু-মুসলিম একসাথে এই গান গেয়েই তার বিরোধিতা করেছিল। ভাবতেও খারাপ লাগে, রাষ্ট্রবাদিতার মন্ত্র এই গান নিয়েও ধর্মীয় বিতর্ক হচ্ছে?" বিজেপি আরও বলছে, তিন তালাকের মতো সামাজিক বিষয়, অভিন্ন দেওয়ানি বিধির মতো সাংবিধানিক বিষয় কিংবা ইয়াকুব মেমনের ফাঁসির মতো জাতীয় নিরাপত্তার মতো বিষয়কে যারা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণে দেখেন - তারাই আজ বন্দে মাতরমের বিরোধিতা করছেন। ভারতের মুসলিম ধর্মগুরুরা অবশ্যই এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন, কারণ এই মাতৃবন্দনা তাদের মতে ঘোর ইসলাম-বিরোধী। ভারতের রাষ্ট্রগীত বা ন্যাশনাল সং 'বন্দে মাতরম' সে দেশের মুসলিমদেরও গাওয়া উচিত কি না - আজ মাদ্রাজ হাইকোর্টের একটি রায়ের পর সেই বিতর্ক নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে। +text: শরীরের দুষিত পদার্থ বের করে দেবার কাজ করে কিডনি। সাধারণত মানব দেহে একটি কিডনির ওজন হয় ১২০ থেকে ১৫০ গ্রাম। ধারণা করা হচ্ছে, ভারতে এটিই সর্বোচ্চ ওজনের কিডনি। এ রোগী এক ধরণের কিডনি রোগে ভুগছিলেন, যার মাধ্যমে সমগ্র কিডনিতে সিস্ট তৈরি হচ্ছিল। অস্ত্রোপচারের সাথে জড়িত এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, এ ধরণের রোগে যারা ভুক্তভোগী তাদের কিডনির আকার বড় থাকে। দিল্লীর শ্রী গঙ্গা রাম হাসপাতালের চিকিৎসক সাচিন কাঠুরিয়া বলেছেন, রোগীর কিডনিতে সংক্রমণ এবং অভ্যন্তরীণ রক্তপাত হচ্ছিল। সেজন্যই কিডনি অপসারণ করা হয়েছে। অন্যথায় কিডনি অপসারণের প্রয়োজন হতো না বলে সেই চিকিৎসক জানিয়েছেন। "এ রোগীর একটি খারাপ ইনফেকশন হয়েছিল যেটি অ্যান্টিবায়োটিকে কাজ করছিল না। তাছাড়া কিডনির আকার অনেক বড় হওয়ায় তার শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হচ্ছিল। সেজন্য এটি অপসারণ না করে আমাদের উপায় ছিল না," বলছিলেন চিকিৎসক সাচিন কাঠুরিয়া। তিনি বলেন, অপারেশনের সময় চিকিৎসকরা ধারণা করেছিলেন যে কিডনির আকার বড় হবে। কিন্তু এতো বড় কিডনি তাদের বিস্মিত করেছে। "তার আরেকটি কিডনি আরো বড়," চিকিৎসক সাচিন কাঠুরিয়া বলেন বিবিসিকে। তিনি বলেন, গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অনুযায়ী সর্বোচ্চ ওজনের কিডনি ৪.৫ কেজি। যদিও ইউরোলজির বিভিন্ন জার্নালে এর চেয়ে বড় আকারের কিডনির রেকর্ড আছে। আমেরিকায় ৯ কেজি এবং নেদারল্যান্ডসে ৮.৭ কেজি ওজনের কিডনি পাওয়া গেছে। ভারতের চিকিৎসকরা একজন রোগীর দেহ থেকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ৭.৪ কেজি ওজনের একটি কিডনি অপসারণ করেছে। +text: দু'মাথাওয়ালা কপারহেড সাপটি সবাইকে বিস্মিত করেছে বৈজ্ঞানিকরা বলছেন এটা খুবই দুর্লভ এক ঘটনা। ভার্জিনিয়া রাজ্যে এক বাড়ির বাগানে সাপটি পাওয়া যায়। কপারহেড সাপ সাধারণ ১৮ থেকে ৩৬ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। এটি একটি বিষাক্ত এবং ভাইপারজাতীয় সাপ যা যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাংশে পাওয়া যায়। কপারহেড সাপকে আক্রমণাত্মক বলে মনে করা হয় না। সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, দু'মাথাওয়ালা এই সাপটি একটি বাচ্চা সাপ এবং মাত্র ইঞ্চি ছয়েক লম্বা। দু-মাথা নিয়ে জন্মানো প্রাণীকে বলা হয় বাইসেফালিক। এগুলো বেশি দিন বাঁচে না, এবং এদের পক্ষে প্রাকৃতিক পরিবেশে বেঁচে থাকা খুবই কঠিন বলে সর্পবিশেষজ্ঞ ড. জন ডি ক্লিওফার এক ফেসবুক পোস্টে মন্তব্য করেছেন। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: সাপ কেন মানুষের ঘরে এসে বাসা বাঁধে সাপের কামড়: কত ভয়ানক হুমকি? এটাই কি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সাপ? দু'মাথাওয়ালা সাপ দেখতে পাওয়া খুবই বিরল ঘটনা অনেক সময় এমনও হয় যে একটি মাথা অপর মাথাটিকে আক্রমণ করে। মনে করা হচ্ছে যে বন্যপ্রাণীর কোন একটি আশ্রয়কেন্দ্র এ সাপটিকে তাদের কাছে রাখবে। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সাময়িকী মন্তব্য করেছে, দু'মাথাওয়ালা সাপকে অনেকটা মাঝে মাঝে যে জোড়া-লাগানো শিশু জন্মের ঘটনা ঘটে - তার সাথে তুলনা করা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া রাজ্যে একটি দু'মাথাওয়ালা কপারহেড সাপ পাওয়া গেছে। +text: আইসিএমআর তাদের প্রকাশনা 'ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ মেডিকাল রিসার্চ'-এ একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণার বিবরণ প্রকাশ করে এই তথ্য জানিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গার্গল করা জল করোনা পরীক্ষার নমুনা হিসাবে ব্যবহার শুরু হলে একদিকে যেমন পরীক্ষার খরচ কমবে অনেকটাই, আর অন্যদিকে যেসব স্বাস্থ্যকর্মী নমুনা সংগ্রহের সঙ্গে যুক্ত, তাদের সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকিও অনেকটা কম হবে। দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস বা এইমস হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন চিকিৎসক এই গবেষণাপত্রটি লিখেছেন। তারা বলছেন, "লালরস সংগ্রহ করার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের যেমন প্রশিক্ষণ দরকার হয়, তেমনি তাদের ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিও থাকে। রোগীরাও লালরস সংগ্রহের সময়ে কষ্ট পান আবার নানা আনুষঙ্গিক জিনিষেরও প্রয়োজন হয়।" আইসিএমআর-এর একটি গবেষণা শাখা। "এইসব অসুবিধাগুলো দূর করে এবং পরীক��ষার ফলাফল সঠিক রেখে নমুনা সংগ্রহের বিকল্প পদ্ধতি খুঁজে দেখা দরকার, যার একটি হতে পারে গার্গল করা জল নমুনা হিসাবে ব্যবহার করা," মন্তব্য ওই গবেষণা পত্রের। এইমস হাসপাতালে ভর্তি ৫০ জন করোনা সংক্রমিতর লালারস এবং গার্গল করা জল সংগ্রহ করে এই গবেষণা চালানো হয়েছে। তারপরে দুই ধরণের নমুনাই আর টি.পি.সি.আর পদ্ধতিতে পরীক্ষা করে একই ফলাফল পাওয়া গেছে সব রোগীর ক্ষেত্রেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশ কয়েকটি রোগ নির্ণয়ের জন্যই গার্গল করা জল নমুনা হিসাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। করোনা পরীক্ষার ক্ষেত্রেও সেট করা হলে অনেকগুলো দিক থেকেই ভাল হবে। ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ডা. অমিতাভ নন্দী বলছিলেন, "লালারস সংগ্রহ করার সময়ে অনেক রোগীই হাঁচি দিয়ে দেন বা তাদের কাশি এসে যায়। আর তার মুখের খুব কাছেই মুখ নিয়ে কাজ করতে হয় যিনি নমুনা সংগ্রহ করছেন, সেই স্বাস্থ্যকর্মীকে। এর থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। আর গার্গল করা জল রোগী বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিজেই সংগ্রহ করে পরীক্ষাকেন্দ্রে দিয়ে দিতে পারবেন।" মেডিকেল গবেষণা কেন্দ্র এইমস। আরও পড়তে পারেন: বাংলাদেশে দীর্ঘ দিন ধরে পজিটিভ থাকছেন অনেকে, ঝুঁকি কতটা? বাংলাদেশে কোন জেলায় কতজন করোনাভাইরাস শনাক্ত ‘ল্যাবে নমুনা পৌঁছানোর আগেই নেগেটিভ রিপোর্ট’ ভারতে উৎপাদিত টিকা বাংলাদেশ কীভাবে পাবে তার কথায়, এর ফলে স্বাস্থ্যকর্মীর ঝুঁকি যেমন কমবে, তেমনই খরচও কমবে পরীক্ষার। "নমুনা সংগ্রহের জন্য অন্তত দুজন স্বাস্থ্যকর্মী, তাদের পুরো পিপিই, নমুনা সংগ্রহের জায়গা - এসব খরচ তো আর থাকবে না গার্গল করা জল যদি নমুনা হিসাবে ব্যবহার করা যায়। তাই খরচও কমে আসবে," বলছিলেন ডা. নন্দী। গবেষণা পত্রটি লিখেছে, নমুনা সংগ্রহের পরে দুই ধরণের নমুনা সংগ্রহ পদ্ধতি নিয়ে রোগীর সুবিধা-অসুবিধা সম্বন্ধেও জানতে চাওয়া হয়েছিল। বাহাত্তর শতাংশ রোগী জানিয়েছেন যে লালারস সংগ্রহের পদ্ধতিটিতে তারা মাঝারি থেকে বেশি কষ্ট পেয়েছেন, আর ২৪% রোগী গার্গল করার ক্ষেত্রে অসুবিধার কথা বলেছেন। পাবলিক হেল্থ ফাউন্ডেশান অফ ইন্ডিয়া, ব্যাঙ্গালোরের পরিচালক ও মহামারি বিশেষজ্ঞ ডা. গিরিধার বাবু ওই গবেষণা পত্রটি সম্বন্ধে মন্তব্য করছিলেন, "শুধু হাসপাতালের চৌহদ্দিতে গবেষণাটা না করে যদি বাইরে বেরিয়েও করা হত, তাহলে আরও ভাল হত। কিন্তু এই গবেষণার ওপরে ভিত্তি করেই একটা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রোসেডিওর তৈরি করা যেতে পারে, যাতে দ্রুত এই পদ্ধতি কাজে লাগানো যায়।" তবে এই পদ্ধতির একটা সমস্যার কথাও বিশেষজ্ঞরা বলছেন। "অনেক সময়েই বৃদ্ধ বা গুরুতর অসুস্থ রোগীরা এবং শিশুদের পক্ষে গার্গল করা কঠিন হয়," মন্তব্য ডা. অমিতাভ নন্দীর। কিন্তু করোনা পরীক্ষার খরচ কম হওয়া আর নমুনা সংগ্রহের পদ্ধতি সহজ হওয়ার ফলে গার্গল করা জল নমুনা হিসাবে ব্যবহার করা শুরু হলে করোনা পরীক্ষার সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। করোনাভাইরাস: সুস্থ হয়ে উঠতে কতদিন লাগে? নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে করোনাভাইরাস : কীভাবে বানাবেন আপনার নিজের ফেসমাস্ক আপনার কি দ্বিতীয়বার কোভিড ১৯ সংক্রমণ হতে পারে? টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? 'হার্ড ইমিউনিটি' কী, এর জন্য কতটা মূল্য দিতে হবে? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় ভারতের চিকিৎসা গবেষণা সংস্থা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিকেল রিসার্চ বা আইসিএমআর বলছে, মানুষের গলায় গরগরা বা গার্গল করা জল পরীক্ষা করেও তার করোনা সংক্রমণ হয়েছে কী না, তা জানা সম্ভব। +text: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেজা মে উগ্রপন্থা মোকাবেলার জন্য সবাইকে একত্রিত হতে বলেছেন। তাঁর ভাষায় "যথেষ্ট হয়েছে। আর নয়। শত্রু মোকাবেলার জন্য এখনই সময়"। লন্ডন ব্রিজ ও বারো মার্কেটে শনিবার রাতে যে হামলার ঘটনা ঘটেছে তাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ জনে। আহত অন্তত ৪৮ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ওই হামলার পর রোববার ডাউনিং স্ট্রিটে এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী টেরেজা মে বলেন, ব্রিটেনে গত তিন মাসেরও কম সময়ে এটি তৃতীয় সন্ত্রাসী হামলা। প্রথম হামলাটি হয় মার্চ মাসে ওয়েস্ট মিনস্টার ব্রিজে। দুই সপ্তাহ আগে ম্যানচেস্টার অ্যারেনায় আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটে। আর গতকাল শনিবার লন্ডনের কেন্দ্রস্থলেই হলো আরো একটি হামলা। "এ হামলাগুলোতে সন্ত্রাসীদের যে পরিকল্পনা তা দেখে মনে হচ্ছে এসব হামলা পরস্পরের সাথে সম্পর্কিত নয়। কিন্তু সন্ত্রাসী হামলার নতুন নতুন ধরণ দেখছি আমরা। আর সন্ত্রাসী হামলা তো সন্ত্রাসী হামলাই। তারা কখনো একে অন্যের কাজঅনুকরণ করছে । আবার কখনো সবচেয়ে হিংস্র আর ভয়াবহভাবে আক্রমণ করছে"। "সন্ত্রাসীরা যেভাবে কাজ করছে যেভাবে হামলা চালাচ্ছে ���া ব্রিটেন যথেষ্ট সহ্য করেছে, আর নয়" -বলেন মিস মে। সন্ত্রাসী হামলা নিয়ন্ত্রণে নতুন পরিকল্পনা আনার কথাও জানান তিনি। তিনি বলেছেন, ব্রিটেনের মূল্যবোধ বজায় রেখেই চলতে হবে কিন্তু যখন চরমপন্থা, সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধের বিষয় আসবে তখন কিছু বিষয় পরিবর্তনের কথা ভাবতে হবে। নির্বাচনের চারদিন আগে লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে হামলার ঘটনায় আজ নির্বাচনী প্রচারণাও বন্ধ রেখেছে রাজনৈতিক দলগুলো। কিন্তু মিস মে বলেছেন, "তাদেরকে আমাদের গণতন্ত্রের পথ রোধ করতে দেওয়া যাবে না"। কাল সোমবার থেকে আবার পুরোদমে নির্বাচনী প্রচারণা চলবে এবং নির্ধারিত দিনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান টেরেজা মে। ইস্ট লন্ডনের বিভিন্ন ফ্ল্যাটে তল্লাাশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেজা মে ইসলামী চরমপন্থা প্রতিরোধে ৪ টি প্রস্তাবনার কথা জানিয়ে বলেন, "প্রথমত সাম্প্রতিক হামলাগুলো কোনো একটি নেটওয়ার্কে সম্পৃক্ত নয়, তারা একটি সাধারণ ধারণার অনুসারী। এককভাবে ধ্বংসাত্বক ইসলামী চরমপন্থাকে লালন করে তারা"। "তারা বলতে চায় স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পাশ্চাত্য ধ্যানধারণা ইসলামের ধ্যানধারণার পরিপন্থী। এই ধারণা প্রতিরোধ করাই হবে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ"। "তবে সেটা শুধু সামরিক শাসন দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, তাদের মানসিকতা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে সম্ভব"- -বলেন প্রধানমন্ত্রী টেরেজা মে। দ্বিতীয় প্রস্তাব সম্পর্কে টেরেজা মে বলেন, উগ্রপন্থার এসব ধ্যানধারণা যেন আরো ছড়িয়ে না যায়, তারা যেন কোন জায়গা না পায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। ইন্টারনেটনির্ভর সেবাগুলো নিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে একত্রে কাজ করার পরিকল্পনার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। "ইন্টারনেটে তারা উগ্রপন্থী কর্মকান্ডের পরিকল্পনা করে। এগুলো রুখতে আন্তর্জাতিক চুক্তি করতে হবে যেখান থেকে এসব নিয়ন্ত্রণ করা হবে"। "তৃতীয়ত, এসব চরপন্থীদের শুধুমাত্র অনলাইনে বাধা দিলেই হবে না। বাস্তব জীবনেও এসব চরমপন্থীদের নিরাপদ স্থান রয়েছে সেগুলো ধ্বংস করতে হবে। সিরিয়া ও ইরাকে আইএসের অবস্থান নির্মূলে সামরিক অভিযান হচ্ছে। সে ধরনের অভিযান এখানেও হতে হবে"। প্রধানমন্ত্রী মে'র ভাষ্য অনুযায়ী 'উগ্রপন্থাকে অনেক সহ্য করা হয়েছে এদেশে"। সেকারণে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমাজের বিভিন্ন অংশে এদের চিহ্নিত করত��� সবাইকেই কাজ করতে হবে। এছাড়া চতুর্থ পরিকল্পনায় টেরেজা মে কাউন্টার টেরোরিজম স্ট্র্যাটেজির কথা উল্লেখ করেন। তাঁর মতে এখনকার সন্ত্রাসী হামলাগুলো আরো বেশি জটিল হয়ে উঠছে। হামলা বা হুমকিগুলোর বিষয়ে ব্রিটেনের 'স্ট্র্যাটেজি' নিয়ে পুনরায় ভাবার সময় এসেছে বলছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি বিবেচনায় ব্রিটেনে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি রয়েছে। তবে ম্যানচেস্টার অ্যারেনায় বোমা হামলার পর যে মাত্রায় সতর্কতা জারি ছিল এবার সেই মাত্রায় জারি করা হয়নি। আরো পড়ুন: লন্ডন হামলা: এখন পর্যন্ত যা জানা যাচ্ছে লন্ডনে কেমন আছে বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলোয়াড়রা? লন্ডন ব্রিজ ও বারো মার্কেটে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেরেজা মে বলেছেন, যে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় সবাইকে একত্রিত হবার এখনই সময়।তিনি বলেছেন "উগ্রপন্থাকে অতিরিক্ত সহ্য করা হচ্ছে এদেশে, তা বন্ধ করতে হবে"। +text: জর্ডন সহ অল্প কিছু দেশে এখনো এরকম আইন আছে জর্ডানের পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ ৩০৮ ধারা নামের ওই বিতর্কিত আইনটি বাতিলের পক্ষে ভোট দেয়। তবে এটা কার্যকর হবার আগে এর পক্ষে পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ এবং বাদশার অনুমোদন লাগবে। মানবাধিকার ও নারী অধিকারকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরেই এ আইনটি বাতিলের জন্য আন্দোলন করছিলেন। কিন্তু এর পক্ষের লোকেরা বলছিলেন, এর ফলে নারীদেরকে সামাজিক দুর্নামের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হতো। এ আইনে ছিল যে ধর্ষণের শিকারকে ধর্ষণকারী বিয়ে করলে মামলা তুলে নেয়া যেতো । তিন বছরের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটানো যাবে না, এমন বিধানও ছিল। আইনটি বাতিল হওয়ার প্রস্তাব পার্লামেন্টে পাস হওয়ায় নারী অধিকার গোষ্ঠীগুলো আনন্দ প্রকাশ করেছে। তারা একে নারী আন্দোলনের বিজয় বলে আখ্যায়িত করেন। জর্ডান ছিল এমন অল্প কয়েকটি দেশের একটি যাতে এ ধরণের আইন রয়ে গিয়েছিল। কিছুদিন আগে তিউনিসিয়া ধর্ষণ সংক্রান্ত এ ধরণের আইন বাতিল করেছে। লেবাননেও এ রকম একটি আইন সংস্কার প্রক্রিয়া চলছে। তবে মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার যেসব দেশে এরকম আইন আছে সেগুলো হলো আলজেরিয়া, ইরাক, কুয়েত, লিবিয়া, ও সিরিয়া, এবং ফিলিস্তিন। এ তথ্য হিউম্যান রাইটস ওয়াচের। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: আমরা শত্রু নই: উত্তর কোরিয়াকে যুক্তরাষ্ট্র 'আমার দেয়া ছাগল মারা যায় নি. মানহানিও হয়নি' আমেরিকার স্কুলে ধর্মগ্রন্থ পড়া বন্ধ হয়েছিল যে মামলায় জর্ডানে ধর্ষণকারী যদি ধর্ষণের শিকার নারীকে বিয়ে করে তাহলে সে শস্তি এড়াতে পারবে - এমন একটি আইন বাতিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন সেদেশের এমপিরা। +text: ঢাকায় চলাচলের ক্ষেত্রে অ্যাপসভিত্তিক মোটরসাইকেলের জনপ্রিয়তা বেশ চোখে পড়ার মতো। শুধুমাত্র পিক মি লিমিটেড ছাড়া এখন পর্যন্ত কোন রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সের আবেদন করেনি বলে জানিয়েছে বিআরটিএ। গত ২০ জুন এক বৈঠকে পহেলা জুলাই থেকে রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলোকে লাইসেন্স দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিআরটিএ। নিবন্ধনের কোন সময়সীমা না থাকায় পরে যেকোন সময় নিবন্ধনের সুযোগ রয়েছে বলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়। এতে কী ধরণের সুবিধা পাওয়া যাবে? মূলত পরিষেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকারি নজরদারিতে আনার পাশাপাশি বৈধতা দিতে এই লাইসেন্স দেবে বিআরটিএ। এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানটির সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক পরিচালক মাহবুব-ই রব্বানি বলেছেন, রাইড শেয়ারিং সেবাদাতা কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে এতদিন নানা অভিযোগ থাকলেও বিআরটিএ কোন ব্যবস্থা নিতে পারছিল না। এখন নীতিমালার আওতায় সব প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা যাবে। পাশাপাশি পুরো প্রক্রিয়াটিকে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে আনার মাধ্যমে সরকারও রাজস্ব আদায় করতে পারবে বলে তিনি জানান। নিবন্ধনের পর রাইড শেয়ারিং অ্যাপগুলো আগের নিয়মেই পরিচালিত হবে। রাইড ডাকা বা রাইডে চলাচলের পদ্ধতিতে কোন পরিবর্তন হবেনা। তবে নীতিমালার আওতায় গ্রাহক সেবার মান উন্নত হওয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তা অনেকাংশে নিশ্চিত করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছে বিআরটিএ। ঢাকায় দ্রুত চলাচলের জন্য মানুষ ব্যবহার করেন অ্যাপভিত্তিক মোটর সাইকেল রাইড সেবা লাইসেন্স না থাকলে কি হবে: যদি কোন রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান একবার বিটিআরসি-এর নিবন্ধন পান - তাহলে তাদের প্রতিটি নীতিমালা মেনে চলতে হবে বলে জানিয়েছেন মিস্টার রব্বানি। যদি কোন প্রতিষ্ঠান নীতিমালার শর্ত ভাঙেন তাদের প্রাথমিকভাবে ওই প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন বাতিল করে দেয়া হবে। পাশাপাশি তাদের কার্যক্রম বন্ধ করাসহ প্রচলিত আইনানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানান তিনি। রাইড শেয়ারিং সার্ভিস পরিচালনার শর্তাবলী: রাইড শেয়ারিং সার্ভিস নীতিমালা ২০১৭-এ পরিসেবাগুলো পরিচালনার জন্য ৮টি অনুচ্ছেদে মোট ৫০টি শর্ত জুড়ে দেয়া হয়। এর মধ্যে গ্রাহক সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু শর্ত এখানে উল্লেখ করা হলো: অনেকেই গাড়ি না কিনেও এসব অ্যাপ দিয়ে গাড়ির সুবিধা পাচ্ছেন। ঢাকা শহরে বিশৃঙ্খল যানবাহনকে একটি ব্যবস্থাপনায় আনা একটি চ্যালেঞ্জ। রাইড শেয়ারিং এর ভাড়া কিভাবে নির্ধারিত হবে: বিআরটিএ- এর রাইড শেয়ারিং নীতিমালা ২০১৭ অনুযায়ী এই পরিসেবার আওতায় থাকা সব মোটরযানের ভাড়া ট্যাক্সিক্যাব সার্ভিস গাইডলাইন ২০১০ অনুযায়ী নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি হতে পারবেনা। কিভাবে এই নিবন্ধন করতে হবে? রাইড শেয়ারিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানকে "এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট" এবং মোটরযান মালিকদের "রাইড শেয়ারিং মোটরযান এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট" পূরণ করে জমা দিতে হবে। এই সার্টিফিকেটগুলো পাওয়া যাবে বিআরটিএ-এর নিজস্ব ওয়েবসাইটে। বিআরটিএ তাদের আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে অনলাইনের মাধ্যমে তাদের লাইসেন্স প্রদান করবে বা বাতিল করবে। আবেদনপত্রের সাথে এক লাখ টাকা এনলিস্টমেন্ট ফিস সেইসঙ্গে ট্রেড লাইসেন্স, ইটিআইএন সার্টিফিকেট, ভ্যাট ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে। এই সার্টিফিকেটের মেয়াদ এক বছর। মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাস আগে ১০ হাজার টাকা ফিস দিয়ে লাইসেন্স নবায়ন করা যাবে। তবে এই সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে অথবা তথ্যে কোন পরিবর্তন করতে গেলে এক হাজার টাকা ফি প্রদান করতে হবে। এছাড়া মোটরযান এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেটের জন্য মোটরযানের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন ড্রাইভিং লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ফিটনেস সার্টিফিকেট, ট্যাক্স টোকেন, মালিক ও চালক উভয়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি এবং গাড়ির মালিকের টিআইএন সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে। এই সার্টিফিকেটের মেয়াদ তিন বছর। মেয়াদ শেষে মোটরসাইকেল ৫০০ টাকায় এবং গাড়ি এক হাজার টাকায় এই সার্টিফিকেট নবায়ন করতে পারবে। এই সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে এক হাজার টাকা ফি দিতে হবে। সংশোধনের জন্য দিতে হবে ৫০০ টাকা। আরও পড়তে পারেন: ঢাকায় মোটরবাইক সার্ভিস নিয়ে নারীদের অভিজ্ঞতা উবার, পাঠাওসহ রাইড সেবা: যা জানা জরুরি অ্যাপ ব্যবহারে অনাগ্রহ বাড়ছে বাইক চালকদের আগে কেন এই নীতিমালা কার্যকর করা যায়নি মূলত ২০১৬ সালের শেষ দিক থেকে ঢাকায় রাইড শেয়ারিং অ্যাপের ব্যবহার শুরু হয়। সে সময় সরকার এই পরিষেবাকে বৈধতা না দিলেও ব্যাপক জনপ্রিয়তার মুখে বন্ধ করতে পারেনি। এর পরিবর্তে একটি নীতিমালার আওতায় পরিষেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বৈধতা দেবে বলে জানিয়েছিল বিআরটিএ। সে লক্ষ্যে ২০১৮ সালের ১৫ জানুয়ারি বিআরটিএ-এর প্রণীত 'রাইড-শেয়ারিং সার্ভিস নীতিমালা ২০১৭' অনুমোদন করে সরকার, যা ওই বছরের ৮ মার্চ থেকে কার্যকরের কথা ছিল। সে সময় ১৬টি কোম্পানির আবেদন করলেও নীতিমালার কিছু শর্ত পূরণ না করতে না পারায়, তাদের কাউকেই লাইসেন্স দেয়া সম্ভব হয়নি। যদিও তারা লাইসেন্স ছাড়াই তাদের কার্যক্রম চালিয়ে গেছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: যাত্রীদের নিরাপত্তায় রাইড শেয়ারিং অ্যাপগুলো কী করছে? আজকে থেকে অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলোকে লাইসেন্স দেয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। +text: বন্ধ হওয়া চ্যানেলগুলো খুললে এই বার্তা দেখা যাচ্ছে । তবে, বিদেশী চ্যানেলে বাংলাদেশি বিজ্ঞাপন বন্ধের জন্য আগে কেবল অপারেটরদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। এদিকে, কেবল অপারেটরদের সংগঠন বলছে, তথ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পাবার পর ভারত থেকেই ঐ চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে। যদিও এ সংক্রান্ত কোন লিখিত নির্দেশনা তারা পাননি। পয়লা এপ্রিল সোমবার বিকেল থেকে জি-বাংলাসহ বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় ভারতীয় চ্যানেল দেখা যাচ্ছে না। জি-বাংলাসহ এই চ্যানেলগুলোতে গেলেই একটি নোটিশ দেখা যাচ্ছে, যাতে বলা হয়েছে, "পরবর্তী নোটিশ না পাওয়া পর্যন্ত তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে এই চ্যানেলটি সাময়িকভাবে ব্লক করা হয়েছে।" তবে এই নোটিশের সঙ্গে কোন ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি। তবে বিস্তারিত তথ্যের জন্য যে ডাউনলিংকের মাধ্যমে ঐ চ্যানেল সম্প্রচার করা হতো, তাদের একটি হটলাইন নম্বর দেয়া রয়েছে নোটিশের নিচের অংশে। বাংলাদেশী চ্যানেলে আপত্তি নেই ভারতের বাংলাদেশে কেন বেশি জনপ্রিয় ভারতের বাংলা চ্যানেল দিল্লির জামিয়াতে বাতিল 'ইসলাম-বিরোধী' ফ্যাশন শো ভারতীয় এই তিনটি টিভি চ্যানেল বাংলাদেশিদের কাছে অনেক জনপ্রিয় কী কী চ্যানেল দেখা যাচ্ছে না? বাংলাদেশের কেবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম আনোয়ার পারভেজ জানিয়েছেন, এই মূহুর্তে ভারতের জি নেটওয়ার্কের কোন চ্য��নেলই দেখা যাচ্ছে না। এর মানে হলো, জি-বাংলা, জি-টিভি, জি-মিউজিক, জি-সিনেমা, জি-নিউজসহ অন্তত ১৪টি চ্যানেল দেখা যাচ্ছেনা। এর মধ্যে জি-বাংলা বাংলাদেশে বিশেষ করে নারীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। তবে, আরেক জনপ্রিয় ভারতীয় চ্যানেল স্টার-জলসা এখনো দেখা যাচ্ছে। কী বলছে সরকার? তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন, সরকার কোন চ্যানেল ব্লক করেনি। তবে, বিদেশী চ্যানেলে বাংলাদেশি বিজ্ঞাপন বন্ধের জন্য যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, এ ঘটনার পেছনে তার ভূমিকা থাকতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। "বাংলাদেশে বিদেশী যেকোন চ্যানেল তাদের কন্টেন্ট দেখাতে পারবে, বিজ্ঞাপন দেখাতে পারবে না, এটা বাংলাদেশের আইন যা ২০০৬ সাল থেকে বলবৎ আছে। এই আইন এতদিন কার্যকর ছিল না, আমরা এখন সেই আইন কার্যকর করার কথা বলেছি পয়লা এপ্রিল থেকে।" "এবং সেজন্য যারা ডাউনলিংক করে, মানে বিদেশী চ্যানেল দেখায়, তারা যাতে সময় পায়, আমরা তাদের দুই মাস আগে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছি। এরপর আরো একবার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছি। সর্বশেষ ৩১শে মার্চ আবারো বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।" "এরপর পয়লা এপ্রিল যে প্রধান দুই কোম্পানি বাংলাদেশে ডাউনলিংক করে, তাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ আইনটি কার্যকর করছি আমরা, অন্য কিছু নয়।" তথ্যমন্ত্রী মি. মাহমুদ জানিয়েছেন, যে আইনের বলে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, সেই আইনে বলা আছে, বিদেশী চ্যানেলে কেবল দেশের পণ্যে কোন বিজ্ঞাপন নয়, কোন বিজ্ঞাপনই প্রদর্শন করতে পারে না। "যদি করে, এটি দুই বছরের কারাদণ্ড, এবং এক লাখ টাকা জরিমানা হবে। দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করলে তিন বছরের কারাদণ্ড ও অন্যান্য শাস্তি হবে।" এখন মি. মাহমুদ বলছেন, সেই নির্দেশনা অনুযায়ী অপারেটররা হয়ত ভারতীয় চ্যানেল ব্লক করে থাকতে পারে। এক জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে নারীদের ৯০ শতাংশ টেলিভিশন দেখেন, কিন্তু এদের ৬০ শতাংশই দেখেন স্টার জলসা কেবল অপারেটররা কী বলছে? বাংলাদেশের কেবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম আনোয়ার পারভেজ জানিয়েছেন, সরকারের কাছ থেকে চ্যানেল ব্লক করা সংক্রান্ত লিখিত কোন নির্দেশনা তারা পাননি। "কেবল অপারেটর হিসেবে আমাদের কোন দিক-নির্দেশ দেয়া হয়নি। তবে যতটুকু জানি এটা দেওয়া হয়েছে স্থানীয় পরিবেশক যারা আছে বিদেশী পে-চ্যানেলের তাদেরকে।" "দ্বিতীয়ত, বিদেশী চ্যানেলে বাংলাদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন ��া দেখানোর নোটিশ সরকার আগে যখন দিয়েছে, তারপর তারা (ভারতীয় চ্যানেল কর্তৃপক্ষ) ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু সরকার এখন বলছেন, কোন বিজ্ঞাপনই দেখানো যাবে না।" "এখন বাংলাদেশের মার্কেটের থেকে যে রেভেনিউ তারা পায়, তাতে বিজ্ঞাপন বিহীন হলে আমার মনে হয় না, তাদের এটা চালানো সম্ভব হবে।" যে কারণে মি. পারভেজ দাবি করেছেন, চ্যানেল ব্লক করার সিদ্ধান্ত ভারতের দিক থেকে কর্তৃপক্ষ নিয়েছে। ভারতের একটি জনপ্রিয় বাংলা টিভি সিরিয়ালের বিজ্ঞাপন ভারতীয় চ্যানেল সম্প্রচারে বিরোধিতা ভারতের বেশ কয়েকটি বাংলা চ্যানেল বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। এর মধ্যে জি-বাংলা, স্টার জলসা এবং স্টার প্লাস রয়েছে। তবে, একদিকে জনপ্রিয়া যেমন রয়েছে এসব চ্যানেলের, তেমনি ভারতীয় কয়েকটি চ্যানেল বিশেষ করে বাংলা চ্যানেল সম্প্রচার নিয়ে বাংলাদেশে যথেষ্ট বিরোধিতাও রয়েছে। জি-বাংলা, স্টার জলসা এবং স্টার প্লাস এই তিনটি ভারতীয় চ্যানেল কেন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে ২০১৪ সালে একটি রুল জারি করেছিল হাইকোর্ট। যদিও পরে এ সংক্রান্ত রিটটি খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। বাংলাদেশে বিনোদন জগতের অনেকেই ভারতীয় কয়েকটি চ্যানেল বন্ধ করার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। যদিও নানা সময় জরিপে এ কথাও সামনে এসেছে যে ভারতীয় টেলিভিশনের চ্যানেলগুলোর বিশাল সংখ্যায় দর্শক রয়েছে বাংলাদেশে। কয়েক বছর আগে করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের এক জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে নারীদের ৯০ শতাংশ টেলিভিশন দেখেন, কিন্তু এদের ৬০ শতাংশই দেখেন স্টার জলসাসহ ভারতীয় বাংলা চ্যানেলগুলো। বাংলাদেশে পয়লা এপ্রিল সোমবার থেকে জি-বাংলাসহ বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় ভারতীয় চ্যানেল দেখা যাচ্ছে না। তবে সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় বলছে, সরকার কোন চ্যানেল বন্ধ বা ব্লক করেনি। +text: ২০১৮ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রস্তুতি নেয়ার সময় বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দল নারী দলের কোচ অঞ্জু জৈন, সহকারী কোচ দেবিকা পাল শেখর ও ট্রেনার কবিতা পাণ্ডে এই পাকিস্তান সফরের অংশ হচ্ছেন না, বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কয়েকজন কর্মকর্তা। তবে পাকিস্তানে সফরের বিষয়ে ভারতীয় এই তিনজন কোচ বোর্ডকে আলাদাভাবে কিছু জানায়নি বলে দাবি করেছেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন। "তবে হ���যাঁ, কিছু বিষয় তো অবশ্যই আছে।" তবে সেই কিছু বিষয় নিয়ে মুখ খোলেননি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী। মি. সুজন বলছেন, "আসলে কোচরা অপারগতা প্রকাশ করেন নি। আমাদের দুইটা টিম একই সাথে যাচ্ছে একটা যাচ্ছে পাকিস্তান একটা শ্রীলঙ্কাতে। আমরা ভাগ করে দিয়েছি কে কোথায় যাবে।" কিন্তু পাকিস্তানের যে সফর সেখানে জাতীয় দল যাচ্ছে, আর শ্রীলঙ্কায় যাবে এমার্জিং দলের মোড়কে, অনূর্ধ্ব ২৩ নারী ক্রিকেট দল। তিনি যোগ করেন, "এখানে বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের পাকিস্তান সফরের দলের সঙ্গে না পাঠিয়ে শ্রীলঙ্কা পাঠানোর।" "ইমার্জিং ক্রিকেট দলও আমাদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। মূলত আমরাই এই তিন ভারতীয় নারী কোচকে পাকিস্তান সফরে পাঠাচ্ছি না।" জাতীয় দলের কোচ কেন অনূর্ধ্ব ২৩ দলে? বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নারী ক্রিকেট উইংয়ের প্রধান শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বিবিসি বাংলাকে বলছেন, "নারী ক্রিকেট দলের কোচদের কোনো চাওয়া-পাওয়া ছিল না, এটা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড নিজ উদ্যোগে তাদের শ্রীলঙ্কা পাঠাচ্ছে।" "যেহেতু আন্তর্জাতিক একটি টুর্নামেন্ট হবে শ্রীলঙ্কায়, তাই আমরা তাদেরকে সেখানে দিচ্ছি। এটা আমাদের নারী উইং ও বোর্ডের সিদ্ধান্ত।" জাতীয় দলের বদলে এমার্জিং দলের মোড়কে, অনূর্ধ্ব ২৩ নারী ক্রিকেট দলের সাথে প্রধান কোচরা যাচ্ছেন - এই ব্যাপারটা একটু ঘোলাটে নয় কি? মি. চৌধুরী বলেন, "নিশ্চয়ই এর পেছনে বিভিন্ন কারণ আছে, আমরা বোর্ড থেকেই এটা করেছি, ওনাদের এখানে কোনো বক্তব্য নেই।" "আমরা স্বীকার করি আর না করি কিছু সমস্যা তো আছেই। পরিস্থিতির কারণেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এটা ততটা সহজ পরিস্থিতি না।" পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশ নারী দলের সাথে নেই প্রধান কোচ নেপথ্যে ভারত-পাকিস্তান ইস্যু? যেহেতু বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলের তিনজন কোচই ভারতীয় নাগরিক, তাই পাকিস্তান সফরে কূটনৈতিক কিছু দিক আছে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার চলমান রাজনৈতিক সংকটের মাঝে, কোনো ভারতীয় যদি পাকিস্তানে সফর করতে চায় সেক্ষেত্রে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি প্রয়োজন হয়। তাই সেই জটিল প্রক্রিয়া এড়াতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন কর্মকর্তা। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে অগাস্ট মাস থেকেই রাজনৈতিক অস্থিরতা বেড়েছে। কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা উঠিয়ে নেয়ার পর থেকেই দু দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পকে ফাটল দেখা গিয়েছে। ভারতের এনডিটিভি, দ্য হিন্দুর মতো গণমাধ্যমে বাংলাদেশের ভারতীয় কোচদের পাকিস্তান সফরে না যাওয়ার খবর এভাবে এসেছে, কাশ্মীর ইস্যুতে চলমান দুদেশের রাজনৈতিক টানাপোড়েনের ভেতর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড তাদের নারী দলের সাথে পাকিস্তানে ভারতীয় কোচদের ইউনিটকে পাঠাচ্ছে না। পাকিস্তান সফরে কোচের দায়িত্ব পালন করবেন সাবেক কোচ দিপু রয় চৌধুরী। দলের ম্যানেজার হিসেবে থাকবেন সাবেক ক্রিকেটার জাভেদ ওমর বেলিম। সাথিরা জাকির জেসি পাঁচ বছর পর জাতীয় দলের সাথে যোগ দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, ভারতীয় কোচদের না থাকাটা ছন্দে প্রভাব ফেলতে পারে। তবে দিপু রয় চৌধুরী নারী দলের সাথে আগে দীর্ঘদিন কাজ করেছে তাই এটা নতুন না। "যারা এখন কোচ বিশেষ করে দিপু রয় চৌধুরী, তিনি বহু বছর নারী দলের কোচ ছিলেন, ওনার জন্য বা ক্রিকেটারদের জন্য এটা নতুন কিছু নয়।" "যেহেতু ওনারা ইন্ডিয়ান পাকিস্তানের ভিসা নিয়ে কিছু জটিলতা থাকতে পারে, তাই আমরা দিপু স্যারের ওপর নির্ভর করছি। আশা করছি এটা পুষিয়ে নেয়া যাবে," বলছিলেন সিনিয়র ক্রিকেটার জেসি। এদিকে সফরে ক্রিকেটারদের নিরাপত্তার বিষয়টিতে আইসিসির নজরদারি থাকবে বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন জাভেদ ওমর। তিনি বলেন, পাকিস্তানে দীর্ঘদিন খেলা বন্ধ। এখন শ্রীলঙ্কা গিয়েছে। "তাই আমাদেরও রাজি হওয়া। আইসিসিও বিষয়টা নজরে রাখবে।" পাকিস্তার সফরে তিনটি টি-য়েন্টি এবং দুইটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। পাঁচটি ম্যাচই লাহোর গাদ্দাফী স্টেডিয়ামে হবে। আগামী ২৬শে অক্টোবর থেকে সিরিজ শুরু হবে। বিবিসি বাংলার যেসব খবর আপনারা পড়তে পারেন: বিশ্বে নারী আবিষ্কারকদের সংখ্যা কম কেন? নতুন সৌদির ক্ষমতাধর নেতা এমবিএস লোকটি কেমন? ডেমোক্রেটিকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ট্রাম্পের বাক্যবাণ পাকিস্তানের মাটিতে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল ও পাকিস্তানের নারী ক্রিকেট দলের মধ্যকার আসন্ন ক্রিকেট সিরিজে বাংলাদেশ দলের সাথে থাকছেন না দলটির ভারতীয় কোচদের ইউনিট। +text: কিম জং আন গত ১৫ই এপ্রিল ছিল উত্তর কোরিয়ার সূর্য দিবস বা “ডে অব দ্য সান” – যা কিম জং আনের পিতামহ এবঙ উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সুং-এর জন্মদিন। কিন্তু ‌সেদিনের অনুষ্ঠানেও উপস্থিত ছিলেন না কিম জং আন। ফলে তার কী হয়েছে তা ন���য়ে ব্যাপক গুজব ছড়াচ্ছে চারদিকে। এরই মধ্যে খবর পাওয়া গেছে যে চীন এমন একটি দল পাঠিয়েছে উত্তর কোরিয়ায় – যাতে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা আছেন। এসব খবরের সত্যতা কতটা, জানতে বিবিসির লিজ ডুসেট কথা বলেছেন এ্যানা ফিফিল্ড-এর সাথে – যিনি মার্কিন দৈনিক দি ওয়াশিংটন পোস্টের বেজিং ব্যুরোর প্রধান। কিম জং আনকে নিয়ে একই বইও লিখেছেন তিনি। সফল পারমানবিক পরীক্ষার পর ২০১৭ সালে সামরিক কমান্ডারদের সাথে কিম জং আন। গুজবের দেশ কোরিয়া গত সপ্তাহের শেষ দিকেই দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকেও খবর পাওয়া গেছে যে কিম জং আনের স্বাস্থ্য নিয়ে কিছু একটা ঘটেছে। তবে এ্যানা ফিফিল্ড বলছেন, উত্তর কোরিয়া এমন একটি দেশ যেখান থেকে সব সময় গুজব আসছে। ''সেখানকার কোন সামরিক কর্মকর্তা মারা গেছেন বলে হয়তো দক্ষিণ কোরিয়ায় খবর বের হলো – আর তার পরই দেখা গেল সেই কর্মকর্তা দিব্যি জীবিত হেঁটে-চলে বেড়াচ্ছেন,“ তিনি বলেন। “তাই এসব গুজব নিশ্চিত করা প্রায় অসম্ভব। উত্তর কোরিয়া এ ক্ষেত্রে একটা ব্ল্যাক হোলের মতো,“ বলছেন তিনি। “তবে এটা বলতেই হবে যে, কিম জং আনকে নিয়ে সম্প্রতি একের পর এক গুজব বের হচ্ছে – এবঙ তা আসছে একাধিক সূত্র থেকে। এ থেকে মনে হচ্ছে যে উত্তর কোরিয়ায় হয়তো সত্যি কিছু একটা ঘটেছে।“‍ এ্যানা ফিফিল্ড বলছেন, এমন মনে করার কারণ - উপরোক্ত দুটি অনুষ্ঠানে কিম জং আনের অনুপস্থিতি। কারণ এটা খুবই অস্বাভাবিক। তবে ঠিক কী ঘটেছে তা এখনো অজানা। সম্প্রতি কিম জং আনকে দুটি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি সম্প্রতি রয়টার্স বার্তা সংস্থা একটি রিপোর্টে বলেছে, কিম পরিবারের একটি অবকাশযাপন কেন্দ্রে কিছুদিন আগে এমন একটি ট্রেন দেখা গেছে – যা ওই পরিবার ব্যবহার করে। উত্তর কোরিয়ার পূর্ব উপকুলের ওই অবকাশ যাপন কেন্দ্রটি কিম জং আনের খুবই প্রিয় বলে জানা যায়। অসুস্থতা নাকি স্রেফ ছুটি? ফলে এর অর্থ হতে পারে এই যে তিনি হয়তো সেখানে কোন অসুস্থতা থেকে সেরে ওঠার প্রক্রিয়ায় রয়েছেন – বলেন এ্যানা ফিফিল্ড। তবে তিনি বলেন, অবশ্য এর এমন অর্থও হতে পারে যে কিম জং আন সেখানে সী-বিচে ছুটি কাটাচ্ছেন। অথবা হয়তো সেখানে কোন উপগ্রহ ব্যবস্থা স্থানান্তর করা হচ্ছে – যা তারা প্রায়ই করে থাকে। ফলে আসলেই ঠিক কি হচ্ছে - তা বলা কঠিন। কিম জং আনকে সবশেষ প্রকাশ্যে দেখা যায় গত ১১ই এপ্রিল। যারা সেই ছবি দেখেছ��ন তারা বলেন, তাকে দেখে তিনি ঠিক সুস্থ আছেন বলে মনে হচ্ছে না। কিম জং আন এখন অনেক মোটা হয়ে গেছেন। তার জীবনযাপনও ঠিক স্বাস্থ্যসম্মত বলে মনে করা হয় না। কিম জং আন - ২০১৯ সালের জুনে তোলা ছবি এ্যানা ফিফিল্ড বলেন – সেই ছবি তিনি দেখেছেন, এবঙ কিম জং আনকে নিয়ে গুজব ছড়ানোর এটাও একটা কারণ। “তার বয়স মাত্র ৩৬, সে তুলনায় তার ওজন অত্যন্ত বেশি, তিনি সর্বক্ষণ ধূমপান করেন। এমন কী তার স্ত্রীও বলেছেন যে তিনি কিছুতেই কিমের সিগারেট খাওয়া বন্ধ করাতে পারছেন না। ফলে তাকে এখন এমন কারো মতই দেখায় যার যে কোন সময় হৃদরোগের মতো সমস্যা হতে পারে।“ যা রটে তা কি বটে? এ কারণে মনে করা হচ্ছে এসব গুজবে হযতো কিছুটা সত্যি আছে। যেমন এক খবরে বলা হয় যে কিম জং আনের রক্তনালীতে স্টেন্ট বা রিং পরানো হয়েছে। এখন বিশ্বব্যাপি যে করোনাভাইরাস মহামরি চলছে, তা নিয়ে উত্তর কোরিয়া বলেছে - সেখানে কেউ আক্রান্ত হয় নি। “তবে সংখ্যায় কম হলেও কিছু লোক হয়তো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হযে থাকতে পারেন – এমন মনে করার কারণ আছে,'' এ্যানা ফিফিল্ড বলেন। ''উত্তর কোরিয়ার কিছু জেনারেলকে কিম-এর আশপাশে থাকার সময় মাস্ক পরতে দেখা গেছে। ফলে তার অসুস্থতার গুজবের পেছনে অনেক কারণই থাকতে পারে।‍“ শনিবার ছিল ‌“কোরিয়ান পেপলস রেভোল্যুশনারি আর্মি”-র ৮৮তম বার্ষিকী। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীর সাথে দিনটি উদযাপনের অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি কিম জং আন-কে। +text: প্লেবয় তাদের মার্চ এপ্রিলের সংখ্যার একটি বিজ্ঞাপনে তাদের বিশেষ একটি ছবি ব্যবহার করেছে, যেখানে হ্যাশট্যাগে বলা হয়েছে যে ন্যাকেড ইজ নরমাল বা নগ্নতা স্বাভাবিক। প্লেবয়ের নতুন চিফ ক্রিয়েটিভ কর্মকর্তা কুপার হেফনার বলেছেন, ''নগ্নতা পরিত্যাগ করার ওই সিদ্ধান্ত ছিল পুরোপুরি একটি ভুল।'' ''আজ আমরা আমাদের পুরনো পরিচয়ে ফিরে যাচ্ছি এবং সবাইকে জানাতে যাচ্ছি আমরা কারা'', বলছেন মি. হেফনার। আরো পড়তে পারেন: উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নতুন কি বার্তা দিচ্ছে? বাংলাদেশে কতটা গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে ভ্যালেন্টাইন'স ডে? মার্কিন এই সাময়িকীটি তাদের মার্চ এপ্রিলের সংখ্যার একটি বিজ্ঞাপনে তাদের বিশেষ একটি ছবি ব্যবহার করেছে, যেখানে হ্যাশট্যাগে বলা হয়েছে যে 'ন্যাকেড ইজ নরমাল' বা নগ্নতা স্বাভাবিক। সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই একে স্বাগত জানিয়েছে বলছেন, ভালো সিদ্ধান্ত। আবার অনেকে এর সমালোচনা করে বলেছেন, তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কারণ তাদের বিক্রি ভালো হচ্ছে না। প্লেবয় ম্যাগাজিন ঘোষণা দিয়েছে যে, তারা গত বছরের একটি সিদ্ধান্ত বাতিল করে আবারও নগ্ন নারীদের ছবি প্রকাশ শুরু করবে। +text: দ্বিতীয় দিনের মত বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। সকাল ৯টার পর থেকেই বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেটের সামনে শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নেন। সেখানে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত রাস্তায় বিক্ষোভ অব্যাহত রাখবেন তারা। গতকাল (মঙ্গলবার) শিক্ষার্থীরা পরিবহন খাতকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করা ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে আন্ডারপাস, ফুটওভারব্রীজ, স্পীডব্রেকার নির্মাণসহ আট দফা দাবি উপস্থাপন করেন। 'সরকার মালিক-শ্রমিক সংগঠনকে ভয় পায়' সড়ক দুর্ঘটনায় আবার ছাত্রের মৃত্যু, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ইলিয়াস কাঞ্চন: জীবন যখন উপন্যাসের মতই ট্র্যাজিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করলেও শিক্ষার্থীরা রাস্তা থেকে সরে আসেননি। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দেন তারা। ঢাকার নর্দ্দায় দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। কী বলছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম? সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মেয়র মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সাথে দেখা করতে যান। এসময় মেয়র আতিকুল নর্দ্দায় অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের কাছে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা ও গণপরিবহন ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য তাদের পরিকল্পনার বিষয়ে জানিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যেতে আহবান জানান। ঢাকার বাস পরিবহন ব্যবস্থা ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক করা, ঝূঁকিপূর্ণ স্থানে ওভারব্রিজ তৈরি করা ও চালকের লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস ইস্যু করার বিষয়ে নীতিমালার প্রয়োগ নিশ্চিত করার আশ্বাস দেন মেয়র আতিকুল হক। ঢাকা মেট্রোপলিপন পুলিশের কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়াও সেসময় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের ধৈর্য্য ধরার আহবান জানান। এরপর মেয়র শিক্ষার্থীদের কয়েকজনের সাথে আলোচনার জন্য তাদের নিজের কার্যালয়ের দিকে নিয়ে যান। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে নর্দ্দা এলাকায় বাড়���নো হয় পুলিশের উপস্থিতি। ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ঢাকার নর্দ্দা ছাড়াও ফার্মগেট ও শাহবাগেও নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকার নর্দ্দার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বাসের চাপায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আবরার আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় আজও (বুধবার) রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। +text: অং সান সু চি কে নিজের কম্পাউন্ডের ভেতরে হাঁটতে দেখেছেন তার এক প্রতিবেশী বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে ৪৯ বছরের জান্তা শাসনের স্মৃতি ফিরিয়ে আনা এই অভ্যুত্থান হুট করে কেন হলো সে প্রশ্ন ঘুরছে দেশটির নানা মহলে। ইয়াঙ্গনে দেশটির প্রধান বিমানবন্দর বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এয়ারপোর্টের ম্যানেজার। মিয়ানমার টাইমস পত্রিকা লিখেছে যে পহেলা জুন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক এ বিমানবন্দর বন্ধ থাকবে এবং বাতিল করা হয়েছে সব ধরনের ফ্লাইট উঠা নামার অনুমতি। অং সান সু চিসহ এনএলডি নেতাদের আটকে রাখা হলেও বেশিরভাগ স্টেট মিনিস্টারকে মুক্তি দিয়ে বাসায় গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। সু চির ন্যাশনাল লীগ ফল ডেমোক্রেসি (এনএলডি) গত নভেম্বরের নির্বাচনে বড় ধরনের জয় পেয়েছিলো আর বিব্রতকর পরাজয় হয়েছিলো সেনা সমর্থিত দলের। ওদিকে এমপিদের যে ডরমিটরিতে আটকে রাখা হয়েছে তার সামনে সেনা প্রহরা বসানো হয়েছে। একজন এমপি ফোনে এএফপিকে বলেছেন, "আমাদের বাইরে যেতে দেয়া হচ্ছে না"। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান ঠিক এখন কেন ঘটলো, পরে কী হতে পারে? মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংকটে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল, প্রেসিডেন্ট এবং সু চি গ্রেফতার মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞার হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের, জরুরি বৈঠকে বসবে জাতিসংঘ এমপিদের যেখানে রাখা হয়েছে তার সামনে সেনা অবস্থান এর মধ্যেই মঙ্গলবার এনএলডির ভেরিফায়েড ফেসবুক পাতায় দেয়া বিবৃতিতে সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ অন্য নেতাদের মুক্তি দাবি করা হয়েছে। বিবৃতিতে এনএলডি বলেছে, "আমরা একে রাষ্ট্র ও সেনাবাহিনীর ইতিহাসে একটি কালো দাগ হিসেবে দেখছি।" বিবৃতিতে একই সাথে নভেম্বরের নির্বাচনের ফলকে স্বীকার করে নেয়ার আহবান জানানো হয়। দলটির একজন কর্মকর্তা এএফপিকে বলেছেন দলীয় কর্মকর্তাদের সাথে সু চির এখনো কোনো যোগাযোগ হয়নি। তবে সু চির একজন প্রতিবেশী তাকে দেখেছেন নিজ বাসার কম্পাউন্ডে। এনএলডির প্রেস অফিসার কি তো এএফপিকে বলেছেন , "তার প্রতিবেশী একজন জানিয়েছেন যে তিনি (সু চি) ভালো আছেন জানাতে কিছু সময় কম্পাউন্ডে হাঁটাহাঁটি করেছেন।" তবে সেনা কর্তৃপক্ষের দিক থেকে এখনো এনএলডি নেত্রীর বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি, যদিও ধারণা করা হচ্ছে যে তাকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আহবান জানিয়েছেন এবং নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছেন। তবে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের স্থিতিশীলতাকে খাটো না করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। চীন আশা প্রকাশ করেছে যে মিয়ানমারের সব পক্ষ সংবিধান, আইনি কাঠামো ও রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার ভিত্তিতে সব পার্থক্য ঘুচিয়ে উঠবে। বিশ্বজুড়ে নানা দেশে মিয়ানমার দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করেছেন দেশটির নাগরিকরা মিয়ানমারে এখন যা হচ্ছে অভ্যুত্থানের একদিন পর মিয়ানমারের আজকের অবস্থা হলো অনেকটা 'স্বস্তিহীন শান্তি'র মতো। বড় শহরগুলোতে সৈন্যরা টহল দিচ্ছে এবং রাস্তাঘাটগুলো নিরব হয়ে পড়েছে। তার সাথে আছে রাত্রিকালীন কারফিউ। ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ আবার চালু হয়েছে আজ মঙ্গলবার সকাল নাগাদ। যদিও ইয়াঙ্গনে অনেকেই মনে করছেন যে গণতন্ত্রের জন্য তাদের দীর্ঘ লড়াই হেরে গেছে। আবার কিছু ক্ষেত্রে প্রতিবাদ দেখা যাচ্ছে। যেমন সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকরা অং সান সু চির মুক্তির দাবিতে বুধবার থেকে কাজ বন্ধের হুমকি দিয়েছে। সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে তারা কালো ব্যাজ ধারণ করেছেন। ডাঃ নাইং তু অং বিবিসি বার্মিজকে বলেছেন, "এ ধরনের অভ্যুত্থান সহ্য করা যায় না। দেশ ও জনগণকে পরোয়া করে না এমন সামরিক শাসকের অধীনে কাজ করতে পারি না বলে আমি পদত্যাগ করেছি। তাদের প্রতি এটাই আমার সমুচিত জবাব।" জাপানে বার্মিজদের প্রতিবাদ হতাশা ও ক্ষোভ ইয়াঙ্গন থেকে বিবিসি বার্মিজ সার্ভিস জানাচ্ছে যে একদিন আগের সেনা অভ্যুত্থানকে হজম করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে পঞ্চাশ লাখ মানুষের শহর ইয়াঙ্গন। আজ সকালেও রাস্তাগুলো ছিলো স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেকটাই নীরব। টেলিযোগাযোগ ফিরে আসা��় আতঙ্কও কিছুটা কমে এসেছে। একদিন বন্ধ থাকার পর বেসরকারি ব্যাংকগুলো তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। রাজধানী নেপিডোতে পার্লামেন্ট ভবনের চারপাশে সৈন্যরা ট্যাংক নিয়ে টহল দিচ্ছে। এবারের অভ্যুত্থান রক্তপাতহীন হলেও করোনা পরিস্থিতির মধ্যে অর্থনীতির ওপর এর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও সম্ভাব্য আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে বিদেশী বিনিয়োগ অনিশ্চিত হয়ে পড়ার ভয় অনেককে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। ইয়াঙ্গনে সিটি হলের বাইরে সেনা সদস্যরা সু চির বিষয়ে কোনো সরকারি তথ্য নেই সোমবার ভোরে আটক হওয়ার পর থেকে অং সান সু চি কি অবস্থায় আছেন সে সম্পর্কে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বিবৃতি আসেনি। এনএলডির সূত্র গুলো অবশ্য বলছেন তিনি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট দুজনেই গৃহবন্দী অবস্থায় আছেন। "আমাদের উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। যদিও আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা যদি তাদের ছবি দেখতে পেতাম তাহলেও স্বস্তি বোধ করতাম," বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন একজন এমপি। আর আটক এমপিদের রাখা হয়েছে তাদের সরকারি ভবনেই যাকে একজন এমপি আখ্যায়িত করেছেন 'ওপেন এয়ার ডিটেনশন সেন্টার' হিসেবে। অং সান সু চি ১৯৮৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত আটক অবস্থায় ছিলেন। এবার আটকের আগ মূহুর্তে দেয়া বিবৃতিতে তিনি জনগণকে অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ডাক দিয়েছেন। জেনারেল মিন অং লাইং স্থগিত হচ্ছে নামি কিছু কোম্পানির কার্যক্রম রয়টার্স জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার উডসাইড পেট্রলিয়াম বলেছেন সেনা অভ্যুত্থান ও অং সান সু চির আটকের পর তারা তাদের কিছু কার্যক্রম স্থগিত রাখবে। জাপানি কোম্পানি সুজুকি বলছে তাদের দুটি কারখানার কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। উডসাইড ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত মিয়ানমারে ৪০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। সিঙ্গাপুরের ওভারসিজ চাইনিজ ব্যাংকিং কর্পোরেশন এবং পসকো ইন্টারন্যাশনাল তাদের কার্যালয় বন্ধ করে কর্মীদের বাসা থেকেই অফিস করার নির্দেশ দিয়েছে। সোমবারের সেনা অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের রাস্তায় রাস্তায় রাইফেল কাঁধে টহল দিচ্ছে সৈন্যরা আর দেশটির নভেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ী এনএলডি নেতা অং সান সু চিকে নিজ কম্পাউণ্ডে হাঁটাহাঁটি করতে দেখা গেছে। +text: আমেরিকায় হাজার হাজার কয়েদিকে বছরের পর বছর ধরে একা একটি ছোটো সেলের মধ্��ে আটকে রাখা হয় ছয় বছর আগের সেই প্রস্তাব অনুসরণ করে এতদিন পর যুক্তরাষ্ট্রে এই প্রথম নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্য আইন করে ১৫ দিনের বেশি নির্জন কারাবাস নিষিদ্ধ করেছে। একবার ভাবুন আপনি একেবারে ছোট একটি কারাকক্ষে একদম একা বছরের পর বছর থাকছেন যেখানে মাঝেমধ্যে আশপাশের এমন কক্ষ থেকে মানসিক ভারসাম্য হারানো কয়েদিদের চিৎকার ভেসে আসছে। কতটা দুর্বিসহ হতে পারে এমন জীবন? কিন্তু এখনও যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কারাগারে অনির্দিষ্টকালের জন্য এমন নির্জন কারাবাসের বিধান কার্যকর। টানা কয়েকবছর নির্জন কারাবাস করেছেন ক্যান্ডি হেইলি। মুক্তির ছয় বছর পর এখনও তার মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা কাজ করে ছোট একটি কারাকক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন একাকী কারাভোগের যন্ত্রণার কথা বিবিসিকে বলেছেন ক'জন সাবেক কয়েদি: ক্যান্ডি হেইলি দুই সন্তানের মা ক্যান্ডি হেইলিকে নারকীয় এই অভিজ্ঞতা ভোগ করতে হয়েছে। হত্যার চেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর ২০১২ সালে তাকে পাঠানো হয় নিউইয়র্কের রাইকার আইল্যান্ড কারাগারে, যদিও পরে তিনি অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পান। “আমার মনে হয়েছিল আমি যেন নরকে ঢুকলাম,“ নিরজন কারাকক্ষে ঢোকার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন মিস হেইলি। “কারাকক্ষটি ছিল একটি এলিভেটরের মাপে যেখানে আপনি ২৪ ঘণ্টা আটকে রয়েছেন।“ আমেরিকার অনেক কিশোর অপরাধ সংশোধন কেন্দ্রেও নির্জন কারাকক্ষ রয়েছে। আরো পড়তে পারেন: রাইকার কারাগারে তার বিরুদ্ধে নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ এনে তাকে তিন বছর নির্জন কারাকক্ষে রাখা হয়েছিল। মিস হেইলি সেখানে কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তার কব্জিতে এখনো সেই নিশানা রয়েছে। “আপনার মাথায় শুধু আত্মত্যার চিন্তা ঘুরবে। আমি ঘুমের বড়ি খেয়েছিলাম। কব্জি কেটেছি, “ বলেন মিস হেইলি। করোনাভাইরাস প্যানডেমিকের আগে আমেরিকায় এমন নির্জন কারাকক্ষে কয়েদির সংখ্যা ছিল ৬০ হাজারেরও বেশি। প্যানডেমিকের পর তা বহুগুণে বেড়েছে। কারণ অনেক কারা কর্তৃপক্ষ কয়েদিদের যতটা সম্ভব স্থানান্তর না করার চেষ্টা করছে। সাধারণ কয়েদিদের নিরাপদ রাখার জন্য বিশ্বের অনেক দেশেই বিপজ্জনক এবং হিংস্র ধরনের কয়েদিদের অন্যদের থেকে পৃথক করে সাময়িকভাবে একাকী নির্জন কারাকক্ষে রাখা হয়। কিন্তু আমেরিকাতে এই পদ্ধতির প্রয়োগ অনেক বেশি। এমনকি মানসিকভাবে বেসামাল কয়েদিদেরও ছোটোখাটো নিয়মভঙ��গের দায়ে দীর্ঘ সময়ের জন্য এই শাস্তি দেয়া হয়। উনিশশো আশীর দশকে আমেরিকাতে এই ব্যবস্থাকে বিপজ্জনক বলে গণ্য করা শুরু হরেও ১৯৮৩ সালে ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের ম্যারিওনে কয়েদিদের হাতে দু'জন কারারক্ষীর মারা যাওয়ার ঘটনার পর নতুন করে এই নির্জন কারাবাসের ব্যাপক প্রয়োগ শুরু হয়। নিউইয়র্ক সিটি কারা কর্তৃপক্ষের সাবেক মেডিকেল অফিসার হোমার ভেন্টারস বিবিসিকে বলেন, “হাজার হাজার কয়েদিকে বছরের বছরের পর বছর ধরে এরকম নির্জন কারাকক্ষে রাখা হয়। “এমন নির্জন কারাবাসের ফলে ভয়াবহ মানসিক ব্যাধি হতে পারে - এমন শক্ত প্রমাণ পাওয়া স্বত্বেও এমন ব্যবস্থা অব্যাহত রয়েছে। “আমি এমন অনেক রোগী পেয়েছি যারা এমন নির্জন কারাকক্ষে থাকার কিছুদিনের মধ্যে বলতেন তারা অশরীরী কাউকে দেখতে পান, অদ্ভুত আওয়াজ পান,“ বলেন মি. ভেন্টারস। “এর কারণ মানুষের মৌলিক যেসব আচরণ - অন্যের সাথে কথা বলা, আদান-প্রদান বা সময় দিনক্ষণ জানা - এসব থেকেও তাকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়।“ বিলি ব্লেক হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বিলি ব্লেককে নিউ ইয়র্কের একটি কারাগারে ৩৪ বছর ধরে ছোটে একটি কক্ষে একাকী রাখা হয়েছিল। তিনি বলেন, তার আশেপাশের কক্ষে এ ধরণের কয়েদিরা রাতভর চিৎকার করতো, দরজা ধাক্কাতে থাকতো। নিজের বিষ্ঠা ছোঁড়াছুঁড়ি করতো। মি. ব্লেক বলেন, তিনি নিজে যেন এমন পাগল না হয়ে যান তার জন্য সবসময় সচেতনভাবে চেষ্টা করতেন। নিজের মনের সাথে লড়াই করতেন। “আমি দেখেছি অনেক কয়েদি নিজের কক্ষের মধ্যে মল-মূত্র ত্যাগ করে তা ছড়াচ্ছে। আমি ভাবতাম আমার যেন এই পরিণতি কখনো না হয়।“ আমেরিকাতে কোন কয়েদিকে নির্জন কারাবাসে পাঠানো হবে এবং সেই শাস্তির মেয়াদ কতদিন হবে সে সিদ্ধান্ত আদালত নেয়না, বরঞ্চ সেটি নেয় সংশ্লিষ্ট কারাগার কর্তৃপক্ষ। অনেক ক্ষেত্রেই সেই সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে একজন কয়েদি মানসিকভাবে সুস্থ থাকবে বা থাকবেনা। অনেক সময় তার জীবন বা মৃত্যুও নির্ভর করে কারা কর্তৃপক্ষের ঐ সিদ্ধান্তের ওপর। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা সাধারণ কয়েদিদের তুলনায় এমন নির্জন কারাবাসে পাঠানো কয়েদিদের মধ্যে আত্মহত্যার ঘটনা ছয়গুণ বেশি। এমনকি মুক্তির পর এক বছর পর্যন্ত তাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা থাকে। যেমন ক্যান্ডি হ্যালি মুক্তি পাওয়ার ছয় বছর পর তার নানারকম মানসিক অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এখনও তার মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা কাজ করে। তিনি বলেন, “আমি যদি কখনো আত্মহত্যা করি, তার কারণ হবে আমার নির্জন কারাবাস।“ ক্যান্ডি হ্যালি অভিযোগ করেন একাকী নির্জন সেলে থাকার সময় তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। এরকম একাকী আটক রাখা কয়েদিদের ওপর নানারকম নির্যাতনের জন্য কারারক্ষীদের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ পাওয়া যায়। রাইকার আইল্যান্ড কারা কর্তৃপক্ষ মিস হেইলির বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজী হয়নি। কিশোরের আত্মহত্যা নির্জন কারাবাস যদি একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকেও এমন বিপর্যস্ত করে ফেলতে পারে, তাহলে শিশুদের ওপর তার প্রভাব কী হয়? তের বছরের সোলান পিটারসন ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের একদিন লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যে স্রেবপোর্টে তার স্কুলের ময়লার বিনে আগুন দিয়েছিল। সেই অপরাধে তাকে ধরে কিশোর অপরাধীদের জন্য তৈরি একটি আটকে কেন্দ্রে নিয়ে রাখা হয়। সেখানে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে তাকে কেন্দ্রের একটি নির্জন কারাকক্ষে ভরে রাখা হয়। কয়েকদিন পর তার বাবা রনি পিটারসনকে ছেলের সাথে দেখা করতে দেয়া হয়। “দরজায় চার ইঞ্চি একটি ফুটো দিয়ে আমি তার সাথে কথা বলতে পারি, “ বিবিসিকে বলেন মি. পিটারসন। “আমি পরিষ্কার বুঝতে পারছিলাম এভাবে একদম একা ফেলে রাখার কারণে সে একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে। দেয়ালে একের পর এক ঘুষি মারছিল।“ টানা পাঁচদিন এরকম নির্জন সেলের ভেতর থাকার পর ১৩ বছরের সোলান পিটারসন কারাগারে আত্মহত্যা করে। মি. পিটারসন বলেন, “রাত দুটোর সময় আমাকে টেলিফোন করে জানানো হয়, আমার ছেলে মারা গেছে।“ “আমি পাথর হয়ে গিয়েছিলাম। আমি কোনোদিন স্বপ্নেও ভাবিনি সে আত্মহত্যা করতে পারে। স্বাভাবিক একটি কিশোর ছিল সে।“ অতি সম্প্রতি আমেরিকাতে নির্জন কারাবাসের নিয়মে খুব ধীরে হরেও কিছু সংস্কার আনা হচ্ছে। যেমন, নিউইয়র্ক রাজ্যে আইন করে ১৫ দিনের বেশি নির্জন কারাবাস নিষিদ্ধ হয়েছে, যদিও এই আইন এক বছর পর্যন্ত কার্যকরী হবেনা। তাছাড়া, রাজ্যের গভর্নর ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি এই আইনে কিছু পরিবর্তন আনতে প্রস্তুত। নিউইয়র্ক সিটিতে ২২ বছরের কম বয়সীদের নির্জন কারাবাস নিষিদ্ধ হয়েছে। কিন্তু কিশোর আটক কেন্দ্রের কারারক্ষীরা এর বিরোধিতা করছে। তাদের যুক্তি এর ফলে কারাগারের মধ্যে সহিংসতা বেড়ে যাবে। বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: ম্যান্ডেলা রুলস নামে জাতিসংঘের এক প্রস্তাবে দীর্ঘ সময়ের নির্জন কারাবাসকে নির্যাতন হিসাবে বর্ণনা করে তা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। +text: গত মাসে অবৈধ বাংলাদেশী সন্দেহে ব্যাঙ্গালোরে ধৃতদের কয়েকজন ঝিনাইদহে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিজিবির একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, মাস-খানেক আগে মহেশপুর সীমান্ত এলাকায় হঠাৎ তারা লক্ষ্য করেন দু-একদিন পরপর ভারত থেকে নারী-পুরুষ-শিশুদের ছোটো ছোটো দল বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ঐ সীমান্তে তারা নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। ঝিনাইদহে বিজিবি'র কর্মকর্তারা বলেছেন, গত এক মাসে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে তারা প্রায় ২৫০ জনকে আটক করে পুলিশের কাছে দিয়েছেন। এদের মধ্যে ১০০ জনের মতো নারী এবং শিশু রয়েছে। বিজিবির অনুরোধে মহেশপুরে স্থানীয় প্রশাসন সীমান্তবর্তী ইউনিয়নগুলোর চেয়ারম্যান কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। স্থানীয় লোকজন নিয়ে তৈরি ঐ সব কমিটি সীমান্ত এলাকায় পাহারা দিচ্ছে। মহেশপুরের সীমান্তবর্তী একটি ইউনিয়নের একজন কাউন্সিলর সায়রা খাতুন বলছিলেন, নজরদারি বাড়ানোর ফলে অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ে উদ্বেগ কিছুটা কমেছে। "গত কিছুদিন দশ-বিশ জন করে ছোট ছোট দলে ভারত থেকে আমাদের দেশে আসছিল। কিন্তু এখন একটা বিরতি দেখছি।" বিজিবি'র কর্মকর্তারাও বলছেন, সীমান্তে স্থানীয় লোকজনকে সম্পৃক্ত করে সতর্ক থাকার কারণে অনুপ্রবেশের চেষ্টা কমেছে। 'মার্ডার করিনি, চুরিও না - কাজ করে খেতে এসেছি' বিজিবি বলছে অনুপ্রবেশকারী, পুলিশ বলছে বাংলাদেশি রাজশাহীর পবা উপজেলায় পদ্মা নদীতে সীমান্তবর্তী চর এবং গ্রামগুলোর মানুষজন রাত জেগে সীমান্ত পাহারা দিচ্ছেন যাতে ভারত থেকে অবৈধভাবে কেউ ঢুকতে না পারে। সেখানে সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন পরিষদগুলোর সদস্যদের নেতৃত্বে গ্রামবাসীদের নিয়ে কমিটি গঠন করে পাহারার এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। চরখানপুর নামের একটি ইউনিয়নের কাউন্সিলর কোহিনুর বেগম বিবিসিকে বলেন, বিজিবির অনুরোধে তারা দুই সপ্তাহ ধরে পাহারা দিচ্ছেন, কিন্তু অবৈধ অনুপ্রবেশের কোনো ঘটনা তাদের হাতে ধরা পড়েনি। "বিজিবি থেকে বলছে যে ভারত থেকে বাংলাদেশে মানুষ ঢুকতে পারে, সেজন্য পাহারা দিতে হবে। বিজিবি ক্যাম্পের দুই পাশে কয়েকটা গ্রুপ করা হয়েছে। গ্রুপে ভাগ করে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত ১টা এবং রাত ১টা থেকে ভোর চারটা পর্যন্ত পাহারা দেওয়া হচ্ছে গত দুই সপ্তাহ ধরে।" আসামে এনআরসি করার পর বহু বাংলাভাষী নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। বিজিবির এক কর্মকর্তার বক্তব্য রাজশাহীতে বিজিবির অধিনায়ক লে: কর্নেল ফেরদৌস মাহমুদ বিবিসিকে বলেন, তাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নাই, তবে সম্প্রতি অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন খবর প্রকাশ হওয়ায় তারা সজাগ থাকছেন। গত মাসেই দক্ষিণ ভারতের ব্যাঙ্গালোর থেকে অবৈধ বাংলাদেশী সন্দেহে ৫৯ জনকে ধরে তাদের বাংলাদেশে পুশব্যাকের উদ্দেশ্যে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় আনা হয় যা নিয়ে ভারতের অনেক পত্রিকাতে খবর হয়েছে। তবে কোন সীমান্ত দিয়ে তাদের ঢোকানো হয়েছে, অথবা তাদের পরিণতি কী হয়েছে - তা জানা যায়নি। ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে, তাদেরকে পুলিশ পাহারায় হাওড়ার একটি সরকারি ভবনে আটকে রাখা হয়। দুদিন পর শনিবার তারা লাপাত্তা হয়ে গেলে হাওড়ার একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা বিবিসির কাছে স্বীকার করেছিলেন, তাদেরকে দলে দলে ভাগ করে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিজিবির কর্মকর্তারা বলছেন, গত মাসে যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে যে ভারতে নাগরিক তালিকা বা এনআরসির ভয়ে তারা বাংলাদেশে ঢুকছে। সরকার কী বলছে বাংলাদেশের সরকার এই ইস্যুকে স্পর্শকাতর হিসেবে বিবেচনা করে কৌশলে এগুতে চাইছে। এই অবৈধ অনুপ্রবেশের ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভারত সরকার বিষয়টিতে আশ্বস্ত করার কারণে বাংলাদেশ এনিয়ে ভারতকে বিব্রত করছে না। "এনআরসি নিয়ে ভারত বার বার বলছে যে এনিয়ে আমাদের উদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই। ভারতের স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন। সেখানে আমরা এনিয়ে প্রশ্ন তুলে বিব্রত করতে চাই না। সেটা করা ঠিক হবেনা।" আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বক্তব্য হচ্ছে, এ নিয়ে আতংকিত হওয়ার মতো কিছু হয়নি। বাংলাদেশের ঝিনাইদহ এবং রাজশাহীর বিভিন্ন সীমান্তে ভারত থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির সাথে স্থানীয় লোকজন কমিটি গঠন করে প্রতি রাতে পাহারা দিচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। +text: দিল্লির গণমাধ্যমে গুরুত্ব পায়নি শিশু ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা। ২০১২ সালের দিল্লির গণধর্ষণের ঘটনায় পুরো রাজ্য যেভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছিলো সাম্প্রতিক ঘটনার প্রতিবাদে কেউ এতো���া সরব হয়নি। ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ। কাশ্মীর উপত্যকার গণমাধ্যমগুলো এই ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে প্রচার করলেও বেশিরভাগ জাতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোয় পায়নি কোন কভারেজ। কাশ্মীরের স্থানীয় সাংবাদিকদের অভিযোগ তারা জানুয়ারি মাসেই এই খবরটি প্রচারে দিল্লি অফিসে যোগাযোগ করেছিলো। তাদের কাছে এই রোমহর্ষক ঘটনার চাইতে কাশ্মীর উপত্যকায় টিউলিপ বাগান উদ্বোধনের খবরটিকে বেশি জরুরি মনে হয়েছে। পরে এপ্রিলের মাঝামাঝি কেন্দ্রীয় নিউজ নেটওয়ার্কগুলো হঠাৎ করেই সংবাদটি প্রচারে উঠেপড়ে লাগে। প্রশ্ন ওঠে, ঘটনার ৪ মাস পর হঠাৎ কেন নড়েচড়ে বসলো দিল্লি মিডিয়া? হিন্দু ডানপন্থী দলগুলো তাদের কমিউনিটির এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানানোই কি তাদের নজর আকর্ষণের কারণ? এ বিষয়ে ভারতের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও সম্পাদক শেখর গুপ্ত জানান, এ ধরণের আচরণ দিল্লির সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রকৃত চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছে। যেখানে তারা জাতীয় সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে দ্বিধাবিভক্ত এবং প্রভাবিত। বিশেষত সেনা নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের খবর প্রচারে তারা বরাবরই পক্ষপাতদুষ্ট। এর পেছনে জাতীয় নিরাপত্তার পাশাপাশি ধর্মীয় অনুভূতিকে বড় কারণ হিসেবে দেখছেন তিনি। বিশেষ করে হিন্দু ডানপন্থী সংগঠনগুলো এমনকি ক্ষমতাসীন বিজেপির দুজন মন্ত্রী গ্রেফতারকৃতদের প্রতি সমর্থন জানানোর পর এটি আলোচনায় উঠে আসে। এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিশ্চুপ ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন কম ওঠেনি। তিনি তার টুইট বার্তায় সুবিচার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েই চুপ করে যান। আরো পড়ুন: কাশ্মীরে আট বছরের মেয়েকে ধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মুসলমান হঠাতেই জম্মুতে ধর্ষণ ও খুন ৮ বছরের শিশুকে? এ বিষয়ে সমাজ বিশ্লেষক ডক্টর বিশ্বনাথান বলেন, দিল্লির সংবাদমাধ্যমগুলো প্রতিনিয়ত হত্যা , ধর্ষণ, সহিংসতা, নির্যাতন, লুটপাটের খবর প্রচার করতে করতে গা সওয়া হয়ে গেছে। প্রতিটি খবরেই তারা অতিরঞ্জন কিছু খুঁজতে চায়। যা তাদের নৈতিক বোধকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তিনি বলেন, মিডিয়া আর রাজনীতিবিদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ ধর্ম, গোত্র ও গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে পড়ায় এখন আর মানবাধিকার বলে কিছু নেই। তার মতে, এখনকার মানুষের বিবেক অনেকটা রিপ ভ্যান উইঙ্কলের ঘুমের মতো। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ৮ বছরের শিশু হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনায় পুরো রাজ্য ক্ষোভে ফেটে পড়লেও সেই বিক্ষোভের উত্তাপ পৌঁছায়নি দিল্লিতে। +text: একই কবরস্থান থেকে কয়েক মাস আগে ১৩টি লাশ চুরি যায়---ফাইল ফটো এর মধ্যে তিনটি লাশের পরিচয় জানা গেছে। গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। গকুলনগর গ্রামের ঐ সামাজিক কবরস্থান পরিচালনা কমিটির সাবেক সদস্য আব্দুর রহমান জানিয়েছেন, সোমবার সকালে গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা কবরস্থানের ঘাস কাটতে গিয়ে দেখতে পান কয়েকটি কবরের উপরের অংশের মাটি সরানো। এরপর সন্দেহ হলে কবরস্থান পরিচালনা কমিটির সদস্য এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের ডেকে কবরস্থান পরিদর্শন করে দেখা যায়, মোট আটটি কবর খোঁড়া হয়েছে। সেখান থেকে সাতটি লাশ চুরি হয়ে গেছে। অপর লাশটি কঙ্কালে পরিণত না হওয়ায় সেটি ফেলে গেছে চোররা। মি. রহমান ধারণা করছেন কবরগুলো থেকে দু-একদিন আগে এই চুরির ঘটনা ঘটে। তিনি জানিয়েছেন, গত অক্টোবর মাসেও এই কবরস্থান থেকে ১৩টি কঙ্কাল চুরি হয়েছিল। গ্রামের বাসিন্দাদের সন্দেহ কঙ্কাল চুরি করে সেগুলো মেডিকেল শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করে একটি অপরাধী চক্র। মি. রহমান জানিয়েছেন, দুই বিঘা জায়গা নিয়ে তৈরি ঐ কবরস্থানটি গ্রামের মূল বসতি থেকে একটু দূরে অবস্থিত হওয়ায়, জায়গাটি বেশ নির্জন এবং মানুষের আনাগোনা সেখানে খুবই কম। বিষয়টি নিয়ে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহসিনুল কাদের বলেন, এ নিয়ে আজই একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। গত অক্টোবরেও এমন আরেকটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছিল। তবে, এ ঘটনায় জড়িত কাউকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশের ঢাকার সাভারের গকুলনগর গ্রামের সামাজিক কবরস্থান থেকে গত দুদিনে সাতটি লাশ চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন গ্রামের বাসিন্দারা। +text: হাজার হাজার মানুষ স্টেজ ফোর বা শেষ ধাপের ক্যান্সারে আক্রান্ত। ইংল্যান্ডের মত উন্নত দেশে এত মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত কেন হচ্ছে এবং কেনই বা একেবারে জীবনের শেষ মুহূর্তে এসে টের পাচ্ছে? ম্যাকমিলান ক্যান্সার সার্পোট বলছে নতুন চিকিৎসার কারণে এটা কমে এসেছিল কিন্তু তারা সতর্ক করে বলছে স্টেজ ফোর ক্যান্সার নিয়ে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকাটা এখন নতুন এক জটিলতা তৈরি করেছে। তেমনি একজন এমা ইউং এমা ইউং এর বয়স ৩৯ বছর। যখন তাঁর বয়স ৩৫ তখন স্তন এবং হা���়ের ক্যান্সার ধরা পড়ে। তিনি বলছিলেন " ক্যান্সার হয়েছে সেটা না জানাটা সবচেয়ে কঠিন অবস্থা"। এমা ইউং "যখন আপনি পরীক্ষা বা স্ক্যান করাবেন তখন থেকে শুরু যতক্ষণ না পর্যন্ত রেজাল্ট দিচ্ছে তখন পর্যন্ত মনের ওপর যা চলতে থাকে তা অবর্ণনীয়। আপনি ঐ সময়টাকে 'স্ক্যানজাইটি' বলতে পারেন" বলছিলেন এমা। ২০১৪ সালে ডাক্তার তাঁর ভুল পরীক্ষা করে। এতে করে ক্যান্সার আরো কিছুটা ছড়িয়ে পড়ার সময় পায়। পরে জানা যায় তিনি স্তন এবং হাড়ের ক্যান্সারের আক্রান্ত। স্টেজ ফোর এমন একটা অবস্থা যখন রোগটা শরীরের এক অংশ থেকে আরেক অংশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এবং বেশির ভাগ সময় নিরাময় করা যায় না। আগে স্টেজ ফোর রোগির হাতে খুব কম সময় থাকতো কিন্তু ম্যাকমিলান ক্যান্সার সার্পোট বলছে নতুন গবেষণার তথ্য বলছে নতুন উন্নত মানের চিকিৎসার মাধ্যমে "আগের তুলনায় বেশি চিকিৎসাযোগ্য এবং অন্যান্য দুরারোগ্য রোগের মত পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাবে"। চিকিৎসা থাকলেও নতুন সমস্যা যদিও ম্যাকমিলান ক্যান্সার সার্পোট বলছে স্টেজ ফোর ক্যান্সার নিয়ে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকা সম্ভব কিন্তু এতে করে নতুন একটা জটিলতা তৈরি হয়েছে। এন্ড অব লাইফ কেয়ার নামে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা এডরিন বেটলি বলছেন " এটা অবশ্যই ভাল খবর কিন্তু দুরারোগ্য এই রোগটির সাথে দীর্ঘদিন বসবাস করা সত্যিই কঠিন পরিস্থিতি"। তিনি বলছিলেন " শারীরিক কষ্টের সাথে সাথে বিভিন্ন হাসপাতালে যাওয়া, ডাক্তারদের সময় নেয়া, টেস্ট করা এছাড়াও মানসিক, আবেগের জায়গাটাতো আছেই। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে একজন রোগি এমনিতেই মানসিকভাবে অসম্ভব ভেঙ্গে পড়েন"। আরো পড়ুন: খিচুড়ির বিশ্বরেকর্ডকে চ্যালেঞ্জ আজমের শরিফ দরগার বন্দীদশা থেকে যেভাবে ক্ষমতার কেন্দ্রে এলেন জিয়া বাংলাদেশে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য চুরির চক্র ম্যাকমিলান ক্যান্সার সার্পোট বলছে তারা এক নতুন গবেষণায় পেয়েছে ইংল্যান্ডে হাজার হাজার মানুষ স্টেজ ফোর বা শেষ ধাপের ক্যান্সারে আক্রান্ত। +text: দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে বিজ্ঞাপন প্রচারের হার দিন দিন কমছে শনিবার (৩০শে মার্চ) এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, এপ্রিল থেকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করা হলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে। তথ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে বিদেশ��� টেলিভিশন চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার করা বন্ধ করা হলে দেশীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে বিজ্ঞাপনের হার বাড়বে এবং দেশের টেলিভিশন শিল্প আর্থিকভাবে লাভবান হবে। এর আগেওএ ধরণের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল, কিন্তু তাতে বিদেশী চ্যানেলে দেশি বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ হয়নি। বিজ্ঞাপন শিল্পের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা মনে করেন এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হলে দেশের টেলিভিশন শিল্প যে খুব বেশি লাভবান হবে, তাও নয়। বিজ্ঞাপন নির্মাতা সংস্থা গ্রে অ্যাডভার্টাইজিং লিমিটেডের কান্ট্রি ডিরেক্টর গাউসুল আজম শাওন বলেন, ''বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করে দিলে ঐ অর্থের পুরো অংশই যে বাংলাদেশের টেলিভিশন খাতে প্রবাহিত হবে, সে ধারণা অমূলক''। "প্রশ্ন হলো, যে টাকাটা একটি প্রতিষ্ঠান বিদেশি চ্যানেলগুলোতে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য খরচ করছে, সেই টাকা খরচ করার যদি সুযোগ না থাকে তাহলে তা দেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য খরচ করা হবে কিনা।" আরো পড়ুন: অতিরিক্ত বিজ্ঞাপন প্রচারে কি মানুষ বিদেশি চ্যানেলে ঝুঁকছে? বিজ্ঞাপনী বাজার: ডিজিটাল মিডিয়ার সম্ভাবনা কতটা? বিটিভিতে প্রচারিত বিজ্ঞাপন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল টিভিতে বিজ্ঞাপন প্রচারের একটি অংশ মি. শাওন মনে করেন বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেয়ার জন্য একটি প্রতিষ্ঠান যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ রাখে, বিজ্ঞাপন দেয়ার সুযোগ না থাকলে সেই অর্থের কিছু অংশ দেশের বাজারে ফেরত আসতে পারে; তবে শতভাগ নয়। "বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দিলে তা যে পরিমাণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারতো, বাংলাদেশের চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দিয়ে যদি সেই পরিমাণ মানুষের কাছ পর্যন্ত পৌঁছানো না যায় তাহলে হয়তো প্রতিষ্ঠানগুলো বিজ্ঞাপনের জন্য ঐ পরিমাণ খরচই করবে না।" তবে বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে বিজ্ঞাপন কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে চ্যানেলগুলোর দূরদর্শিতা এবং গবেষণার অভাবকে দায়ী করেন মি. শাওন। "একটি চ্যানেল যদি তাদের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দর্শক আকর্ষণ করতে না পারে তাহলে বিজ্ঞাপনদাতারাও ঐ চ্যানেলের পেছনে টাকা লগ্নি করতে চাইবে না।" মি. শাওন মনে করেন চ্যানেলের কাছ থেকে দর্শকরা কী চায়, সে বিষয়ে গবেষণা করা হয় না বলেই টেলিভিশন চ্যানেলগুলো দর্শক আকর্ষণ করতে পারছে না এবং এর কারণে বিজ্ঞাপনদাতারাও দেশের টেলিভিশন চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেল��ে। "ভারতের জনপ্রিয় চ্যানেলগুলো প্রতিদিন রিসার্চ করে যে তাদের দর্শক কী দেখা বাড়িয়ে দিলো, কী দেখা কমিয়ে দিলো। সেদিক থেকে হিসেব করলে আমাদের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে দর্শকদের প্রত্যাশার প্রতিফলন হয় না একেবারেই।" মি. শাওন বলেন, "টেলিভিশনগুলো যদি দর্শককেন্দ্রিক অনুষ্ঠান তৈরি করতে পারে, তাহলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রয়োজনে বেশী অর্থ ব্যয় করে হলেও টেলিভিশনেই বিজ্ঞাপন দেবে।" অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দর্শক আকর্ষণ করতে পারছে না বলেই বিজ্ঞাপনদাতারা টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন প্রচারে আনাগ্রহী বলে মনে করেন বিজ্ঞাপন নির্মাতারা টেলিভিশনের জন্য বিজ্ঞাপন তৈরি কমেছে কেন? ইন্টারনেট এবং সামাজিক মাধ্যমের ব্যাপক প্রসারের সাথে সাথে টেলিভিশনে বিজ্ঞাপনের গুরুত্ব আগের চেয়ে কমে গেছে বলে জানান বিভিন্ন বিজ্ঞাপন নির্মাণ সংস্থায় কাজ করা ব্যক্তিরা। বিজ্ঞাপন নির্মাণ সংস্থা ইন্টারস্পিডের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর সাব্বির হোসেন বলেন, "ভিন্ন ভিন্ন পণ্যের জন্য ভিন্ন ধরণের এবং ভিন্ন মাধ্যমের বিজ্ঞাপন তৈরি করা হয়। তবে গত কয়েকবছরে টেলিভিশনের জন্য বিজ্ঞাপন তৈরি করার হার কমে গেছে।" মি. হোসেন বলেন ইন্টারনেট ও সামাজিক মাধ্যমের প্রসার হওয়ায় টেলিভিশনে প্রচারের জন্য ভিডিও তৈরি করার চেয়ে অনলাইনের জন্য ভিডিও তৈরি করায় বেশী আগ্রহী থাকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। "একটি বিজ্ঞাপন তৈরি ও তা বাজারে ছাড়ার ক্ষেত্রে প্রধান যে বিষয়টির দিকে নজর রাখা হয় তা হলো, বিজ্ঞাপনটি কত বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাবে।" দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর জনপ্রিয়তা দিন দিন কমতে থাকায় টেলিভিশনের জন্য বিজ্ঞাপন নির্মাণ করার যৌক্তিকতাও কমছে বলে মনে করেন মি. হোসেন। বাংলাদেশে ১লা এপ্রিল থেকে ডাউনলিঙ্ক করা বিদেশি টেলিভিশন চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।। +text: এক স্কুলছাত্রকে একোলোকেশন শেখাচ্ছেন ড্যানিয়েল কিশ (পেছনে)। তিনি মুখে ক্লিক ক্লিক শব্দ করে তার প্রতিধ্বনি থেকে বস্তুর অবস্থান শনাক্ত করতে পারেন। বাদুড়ও রাতের বেলা ওড়ার সময় এই 'একোলোকেশন' পদ্ধতি ব্যবহার করে এবং শব্দের প্রতিধ্বনি ব্যবহার করে অন্ধকারে সহজ ওড়া উড়ি করতে পারে। এখন নতুন এক গবেষণায় জানা যাচ্ছে যে কিছু কিছু মানুষ, যারা চোখে দেখতে পান না, তারও এরকম পদ্ধতির ব্যবহার জানেন। প্রতিধ্বনিকে ব���যবহার করে তারা 'শব্দকে দেখতে পান।' এই গবেষণার ফলাফল সম্প্রতি ব্রিটেনের রয়্যাল সোসাইটির জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এই ফলাফলে বলা হচ্ছে: বাদুড়ের মতোই দক্ষ একোলোকেটাররা তাদের শব্দের তীব্রতা বাড়িয়ে দেন। কোন বস্তু দৃষ্টিহীন মানুষের পাশে চলে গেলে বা পেছনে চলে গেলে তারা আরও ঘন ঘন ক্লিক ক্লিক করে শব্দ করতে থাকেন। "ভিন্ন ভিন্ন মানুষ ভিন্নভাবে এই আওয়াজ করে থাকেন," বলছেন ড্যানিয়েল কিশ, যিনি নিজেও এই পরীক্ষার একজন গবেষক। ড্যানিয়েল কিশ বলছেন, একোলোকেশন পদ্ধতি মানুষের 'চোখ খুলে দিতে পারে'। আরও দেখুন: নেইমার কি এবারের বিশ্বকাপ খেলতে পারবেন? বাংলাদেশের জাতীয় পার্টির নিয়ন্ত্রণ কার হাতে? "মুখের তালুর সাথে জিহ্বা দিয়ে ক্লিক শব্দ তুলে আমি এই কাজটা করি," বলছেন তিনি, "আশেপাশের শব্দ ভেদ করে এই শব্দ ছুটে যায় চারপাশে এবং আবার ফিরে আসে।" "শব্দটি এতই তীক্ষ্ণ হয় যে কয়েকশো মিটার দূর থেকে ফিরে আসার পরও আমি তার প্রতিধ্বনি শুনতে পাই।" একোলোকেশন নিয়ে যেসব গবেষণা চলছে তার থেকে জানা যাচ্ছে যে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে শুধু বস্তুর অবস্থান সম্পর্কেই জানা যায় না। বস্তুর আকার, দূরত্ব, এবং এমনকি বস্তুটি কী দিয়ে তৈরি তাও জানা সম্ভব। ড. লোর থেলার হচ্ছেন একোলোকশেনের ওপর ব্রিটেনের ডারাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের প্রধান। তিনি জানালেন, তাদের গবেষণায় তারা আটজন দৃষ্টিহীন কিন্তু দক্ষ একোলোকেটরকে একটা ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে দেন। এরপর এরা কানে আঙুল ঢুকিয়ে গুনগুন করে শব্দ করতে থাকেন। তখন গবেষকরা নীরবে একটা ধাতব গোলাকার চাকতি ঘরের কোন একটা জায়গায় বসিয়ে দেন। এরপর একোলোকেটারদের গায়ে স্পর্শ করে তাদের গুনগুন করা থামাতে বলেন এবং ক্লিক ক্লিক করে শব্দ করতে বলেন। এই গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে সামনের কোন বস্তুর চেয়ে পাশের বস্তুর অবস্থান বের করতে একোলোকেটারদের বেশি করে শব্দ তৈরি করতে হয়। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এই বিষয়ে আরও গবেষণা হলে ভবিষ্যতে অন্ধ মানুষও শব্দ ব্যবহার করে সহজে চলাফেরা করতে পারবেন। ড্যানিয়েল কিশ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। কিন্তু তার রয়েছে অদ্ভুত এক শক্তি। +text: বিমানবন্দরে যাত্রীদের তাপমাত্রা পরীক্ষা - সব দেশই এ পদক্ষেপ নিয়েছে তা নয় চীন থেকেই করোনাভাইরাস সংক্রমণের সূচনা এবং সেদেশে অত্যন্ত কঠোর এবং নজিরবিহীন সব পদক্ষেপ নিয়েছিল চীনা কর্তৃপক্���। বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং বা আগত যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়েছে এমন দেশ থেকে আসা যাত্রীদের জন্য বিমানবন্দরে নজরদারি এবং দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষার ব্যবস্থা অনেক দেশ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন গত ১৪ দিনের মধ্যে চীন বা ইরানে গিয়েছিলেন এমন বিদেশী যাত্রীদের ঢুকতে দিচ্ছে না। চীন থেকে আসা সকল ফ্লাইট পাঠানো হচ্ছে ১১টি মার্কিন বিমানবন্দরে, এবং যাত্রীদের জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্ট আছে কিনা তা পরীক্ষা করা হচ্ছে। নজরদারির ব্যবস্থার মধ্যে আছে: বিমানবন্দরে মেডিক্যাল স্টাফ রাখা, আগত যাত্রীদের উদ্বুদ্ধ করা যাতে তারা অসুস্থ বোধ করলে তা বিমানবন্দরের কর্মকর্তাদের জানানো, এবং করোনাভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণগুলো সম্পর্কে তথ্য দেয়া। বিমানবন্দর এবং রেল স্টেশনের মতো অন্যান্য পরিবহন 'হাব'গুলোতে স্ক্রিনিংএর ব্যবস্থা অনেক দেশেই করা হয় নি। প্যারিসে আইফেল টাওয়ারের সামনে মুখোশ পরা একজন তবে এর কার্যকারিতা সীমিত বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মত দিয়েছেন। এর একটা কারণ, করোনাভাইরাস কারো দেহে ঢুকলে তার দেহে সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে ১৪ দিন পর্যন্ত সময় লাগে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, এর ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমিত যাত্রীদের মাত্র অর্ধেককে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। স্কুল কলেজ বন্ধ জাতিসংঘের সংস্থা ইউনেসকো বলছে, ১৪টি দেশ এ পর্যন্ত সব স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে, এবং অন্য ১৩টি দেশ কিছু স্কুল বন্ধ করেছে। জাপানে মার্চের শেষ নাগাদ সব স্কুল বন্ধ করা হয়েছে - যেখানে ১৮৬ জন করোনাভাইরাস সংক্রমিত ব্যক্তি চিহ্নিত হচ্ছে। অন্যদিকে ইতালি আগামী ৩রা এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সব স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে। স্পেনের মাদ্রিদ এলাকায় সব স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করা হয়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি - সংক্রমণ দেখা দিয়েছে এমন জায়গায় - অল্প কিছু স্কুল সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে। উন্মুক্ত সঙ্গীতানুষ্ঠান ও খেলা বন্ধ বেশ কিছু দেশে খেলা বাতিল করা হয়েছে, অথবা দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে খেলা হচ্ছে। ইউরোপে বেশ কিছু ফুটবল, রাগবি ও এ্যাথলেটিক্স ইভেন্ট স্থগিত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় স্থগিত হয়েছে ইন্ডিয়ান ওয়েলস নামের টেনিস টুর্নামেন্ট। ইতালিয়ান ও সুইস ফুটবল লিগ অন্তত দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স ��িগ ফুটবলের কিছু খেলা দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে হবে। ইতালিতে লোকজনের চলাচলের ওপর কড়া নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে আগামী ২৪শে জুলাই জাপানের অলিম্পিক শুরু হবার কথা - তা এখনো স্থগিত করার কোন সিদ্ধান্ত হয় নি তবে জাপানের অলিম্পিক মন্ত্রী বলেছেন এটা যেন নির্ধারিত সময়েই হয় তার জন্য সব চেষ্টা তারা করে যাচ্ছেন। তিনি আরো বলেছেন, তেমন কোন পরিস্থিতি হলে অলিম্পিক পিছিয়ে এ বছরের শেষ দিকে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। বাংলাদেশে এমাসেই দেশটির প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালনের জন্য এক বছরব্যাপি অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন হবার কথা ছিল। দেশটিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিশ্চিত হবার পর সেই অনুষ্ঠানমালার বেশ কিছু অংশ স্থগিত এবং বিদেশী অতিথিদের আগমন পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। জাদুঘর ও পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ বিভিন্ন দেশে কিছু বিশ্ববিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে, কোথাও দর্শনার্থীর সংখ্যা কমানো হয়েছে বা আগতদের বলা হয়েছে একে অপরের খুব কাছাকাছি না যেতে। এক মাস বন্ধ থাকার পর সাংহাইয়ের বিশাল ডিজনি অবকাশ কেন্দ্র আংশিকভাবে খুলে দেয়া হয়েছে। তবে হংকং-এর ডিজনিল্যান্ড এবং জাপানের ডিজনি থিম পার্কগুলো এখনও বন্ধ। এশিয়ার বিভিন্ন দেশে মিউজিয়াম ও অন্যান্য পর্যটন এলাকা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ইতালিতে রোমের কোলিসিয়ামসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। ফ্রান্সে প্যারিসের ল্যুভ মিউজিয়াম করোনাভাইরাস আতংকের বন্ধ করা হয়েছিল তবে এখন তা খুলে দেয়া হয়েছে, তবে কোন দর্শক অসুস্থ বোধ করলে, বা সংক্রমিত দেশ থেকে এসে থাকলে তাদের সেখানে না যেতে বলা হচ্ছে। করোনাভাইরাস গাইড: আপনার প্রশ্নের উত্তর করোনাভাইরাস থেকে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন যে পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা যাবে করোনাভাইরাস প্যারিসে আইফেল টাওয়ার খোলা রয়েছে তবে টিকিট বিক্রি হচ্ছে শুধু ব্যাংক কার্ড দিয়ে বা অনলাইনে। প্যারিসের ডিজনিল্যান্ডও খোলা রয়েছে, তবে তাদের একজন কর্মী গত সপ্তাহে করোনাভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্ত হন। সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনা, ইরাকের কারবালার মত ধর্মীয় পবিত্র স্থানগুলোতে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা বা বিধিনিষেধ আরোপিত হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় লোকজনকে কোয়ারেন্টিন করা চীনের দৃষ্টান্ত ���নুসরণ করে অন্য কিছু দেশও বিভিন্ন এলাকায় লোকজনের চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের চেষ্টা করছে। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কন্টে তার দেশে লোকজনকে ঘরে থাকা এবং ভ্রমণের আগে অনুমতি নেবার আদেশ দিয়েছেন। সেখানে রাস্তা ও বিমানবন্দরেও চেকিং করা হচ্ছে। তবে এর কার্যকারিতা এখনো নিশ্চিত নয়। ইরানে পবিত্র কোম শহরে ব্যাপকভাবে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে এ শহরে বাইরের লোকের ঢোকা বন্ধ করা বা লোকজনের চলাচল সীমিত করার পদক্ষেপ নেয়, তবে এর কিছু সমালোচনা হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় দেগু শহরে করোনাভাইরাস আক্রান্ত দুটি এ্যাপার্টমেন্ট ব্লক কোয়ারেন্টিন করা হয় - যেখানে শিনচিওঞ্জি নামের একটি খ্রীষ্টান ধর্মীয় গোষ্ঠীর লোকের বসবাস করতেন। উত্তর কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ পিয়ংইয়ংএ ৩৮০ জন বিদেশী কূটনীতিক ও অন্যান্য স্টাফদের এক মাসের বেশি সময়ের জন্য তাদের নিজ নিজ বাড়িতে কোয়ারেন্টিন করে রাখে। কোয়ারেন্টিন কী , কেন, কীভাবে করা হয়? করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সব দেশ যে ঠিক একই রকম ব্যবস্থা নিচ্ছে তা নয়। নানা দেশ নানা রকম পদক্ষেপ নিচ্ছে। +text: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৃহস্পতিবার কমিশনে একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে যেখানে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে ধারনা করা হচেছ। অবশ্য সিদ্ধান্ত হলেও গণ-প্রতিনিধিত্ব আইনে পরিবর্তন আনতে হবে। কিন্তু সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের নির্বাচন কমিশনের মধ্যে এই চিন্তাভাবনার খবরে ক্ষুব্ধ বিরোধী বিএনপি। দলের মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনে করেন, অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের আপত্তি রয়েছে জেনেও নির্বাচনের ঠিক আগে ইভিএম ব্যবহারের কথা তোলার পেছনে কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে। বিবিসিকে তিনি বলেন, "ইভিএম ইস্যু তুলে নতুন আরেকটি বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করছে সরকার।" বিএনপি মহাসচিব বলেন, কোনোভাবেই বিএনপির কাছে ইভিএম গ্রহণযোগ্য হবেনা। "সিস্টেমটাই ত্রুটিপূর্ণ। এই পদ্ধতি দিয়ে কখনও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না। তারা (নির্বাচন কমিশন) পুরোপুরি সরকারের তল্পিবাহক হয়ে গেছে। সরকার যা চাইছে তাই তারা করছে।" বর্তমান নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ করে জাতীয় নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছিল গত বছর। সেই রোডম্যাপে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টি বাদ দেয়া হয়েছিল। সে সময় সংলাপে ব���রোধীদল বিএনপিসহ বেশিরভাগ দলই জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করেছিল। ইভিএম এর পক্ষে ছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ তাদের শরিক কয়েকটি দল। বিভিন্ন স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার নির্বাচনে দু'একটি করে কেন্দ্রে বা একটি ওয়ার্ডে একেবারে সীমিত পর্যায়ে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছে। সে কারণে অনেক বিশ্লেষক বলছেন, বড় পরিসরে ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তুতি বা কারিগরি সামর্থ্য নির্বাচন কমিশনের নেই। এছাড়া এমন ব্যবস্থার জন্য ভোটাররাও প্রস্তুত নয় বলে তারা মনে করছেন। নির্বাচন কমিশন ডিসেম্বরের শেষে নির্বাচন করার কথা বলেছে। সে অনুযায়ী নির্বাচনের জন্য তিন মাসেরও কম সময় রয়েছে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী একটি বেসরকারি সংস্থা ফেমা'র মুনিরা খান মনে করেন, ইভিএম ব্যবহারের জন্য এর মধ্যে ভোটারদের প্রস্তুত করা সম্ভব হবে কিনা সেটাও বিবেচনায় নিতে হবে। "ইভিএম ব্যবহারটা সবার জন্য গ্রহণযোগ্য হবে যখন যারা ভোট দেবেন তাদেরও এটাতে আস্থা থাকে।" ইভিএম এখনো বাংলাদেশে বিতর্কিত নির্বাচন কমিশন কী বলছে কেন তারা এখন ইভিএমের কথা বিবেচনা করছেন - এ প্রশ্নে কমিশনের সচিব হেলালউদ্দিন আহমেদ বিবিসিকে বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতি যতটুকু ব্যবহার হয়েছে তাতে রাজনৈতিক দল বা ভোটার কোনো পক্ষ থেকেই কোনো অভিযোগ কখনও আসেনি। "বর্তমান নির্বাচন কমিশন সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভাসহ যতগুলো স্থানীয় সরকার নির্বাচন আমরা করেছি আমরা ইভিএম ব্যবহার করেছি। কোনো না কোনো কেন্দ্রে ব্যবহার করেছি। সফলভাবে ব্যবহার করেছি। এখন আমরা যদি আইনগত সাপোর্ট পাই, তাহলে পার্লামেন্ট ইলেকশনে ইভিএম ব্যবহারের চিন্তা আমাদের আছে।" জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের জন্য গণ-প্রতিনিধিত্ব আদেশে সংশোধনী আনতে হবে। কমিশন এমন প্রস্তাব পাঠালে সরকারের অনুমোদনের পর তা সংসদে পাস করতে হবে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ১৫০,০০০ ইভিএম কেনার একটি প্রকল্পের প্রস্তাব তারা সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। সরকার তা অনুমোদন করলে এই সংখ্যক ইভিএম দিয়ে শখানেক আসনে বেশ কিছু কেন্দ্রে নির্বাচন করা সম্ভব। মাহবুবুল আলম হানিফ আওয়ামী লীগের বক্তব্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বিবিসিকে বলেছ��ন, "ইভিএম যুক্তিসংগত এবং গ্রহণযোগ্য। তবে এটার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের।নির্বাচন কমিশনই সিদ্ধান্ত নেবে তারা কোন পদ্ধতিতে গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন করবে।সরকারের এখানে বলার কিছু নেই।" বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সীমিত পর্যায়ে 'সফল' ব্যবহারের পর এবার জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের চিন্তা করছে তারা। +text: একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার জরিপেও দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে অনেক বিনোদনমূলক টিভি চ্যানেল থাকলেও, জনপ্রিয়তার দিক থেকে যথাক্রমে তৃতীয় এবং সপ্তম রয়েছে স্টার জলসা এবং জি বাংলা। ভারতীয় বাংলা এই চ্যানেলগুলোর মূল আকর্ষণ নাটক এবং কিছু রিয়েলিটি অনুষ্ঠান। বাংলাদেশে ভারতীয় বাংলা নাটকের এই জনপ্রিয়তার কারণ কি? "পরিবারের সুখ-দু:খ নিয়ে কাহিনীটা হয়, সেটা ভাল লাগে। রোমাঞ্চও থাকে। এছাড়াও ভারতের জামা-কাপড় এবং মেকআপও ভালো হয়। এজন্যই দেখি।" বলছিলেন ঢাকার একজন গৃহিণী শিমু আক্তার । একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা নার্গিস জাকিয়া সুলতানা বলেন, সময় কাটানোর জন্য তিনিও ভারতীয় বাংলা সিরিয়ালকেই বেছে নেন। "প্রথমে জি বাংলার রাশি নাটকটা আমার নজরে পড়ে। কিছুদিন দেখার পর মনে হল বাস্তবের সাথে তেমন মিল নেই। কিন্তু এরপরও এটা-ওটা করে কয়েকটা দেখা শুরু করলাম।" তবে ভারতীয় বাংলা নাটকের জনপ্রিয়তা শুধু টিভি পর্দায়ই সীমাবদ্ধ নেই। দীর্ঘ এই সিরিয়ালগুলোর চরিত্রের নামে জামা থেকে শুরু করে শিশুদের খাতার মলাটেও স্থান পেয়েছে এসব নাটকের নায়িকারা। . এই নাটকগুলোর জনপ্রিয়তার পেছনে বেশ কিছু কারণ আছে, তবে সবচেয়ে বড় যে কারণটি বারবার উঠে আসছে এবং সবার মুখ থেকেই উঠে আসছে সেটি হচ্ছে বিজ্ঞাপন। ভারতীয় চ্যানেলে নয়, বাংলাদেশি চ্যানেলগুলোর বিজ্ঞাপন। "বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোতে এখন অনেকটা এমন দাড়িয়েছে যে, বিজ্ঞাপনের ফাঁকে ফাঁকে নাটক দেখানো হয়।" বলেন শফিউল আলম ভূঁইয়া। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্র অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক। পরিবারে নারীদের মধ্যে ভারতীয় নাটকের জনপ্রিয়তা বেশি হলেও অনেক পুরুষই নিয়মিতই এই নাটকগুলো দেখেন অধ্যাপক ভূঁইয়া বলছেন, বাংলাদেশে যে হারে যে হারে নাটক তৈরি হচ্ছে, সে হারে অভিনেতা বা কলাকুশলী তৈরি হয়নি। তার সাথে একমত প্রবীণ অভিনেতা এবং নির্মাতা মামুনুর রশিদ। তিনিও বলছেন, গত এক দশকে বাংলাদেশে প্রচুর নতুন টেলিভিশন চ্যানেল যাত্রা শুরু করেছে এবং নাটকের পরিমাণও বেড়েছে। কিন্তু সেই বৃদ্ধির সাথে সাথে মান তো বাড়েইনি বরং আরো নেমে গেছে। "ভারতীয় নাটকে যারা অভিনয় করে তাদের একটি গ্রুমিং সেন্টারই আছে। কিন্তু বাংলাদেশে এমন কোন ব্যবস্থা নেই। এছাড়াও যারা ভালো অভিনয় করে, তাদের অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। আর বেশি টাকা দিতে হয় বলে ভালো অভিনেতাদেরও নির্মাতারা নিচ্ছে না।" বাংলাদেশে এখন প্রায় ২৩ টি টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচারে রয়েছে এবং প্রচারের অপেক্ষায় রয়েছে আরো প্রায় ১৮ টি চ্যানেল। হাতেগোনা কয়েকটি সংবাদভিত্তিক চ্যানেল ছাড়া সবগুলোতেই প্রচারিত হয় নাটকসহ অন্যান্য বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান। তবে বাংলাদেশি এত চ্যানেলের ভিড়ে, এত নাটকের ভিড়ে ভারতীয় বাংলা নাটকের এতটা জনপ্রিয়তা কেন? "ওরা সিরিয়ালের একটি ভাষা বের করেছে। একটু উচ্চগ্রামের, উচ্চস্বরে কথা বলা, বিস্তৃত একটা সুর আছে তাদের নাটকে। বাঙ্গালি কিন্তু এই সুর ভালবাসে। আর ওরা যেভাবে গল্পটা বলতে পারে তাতে প্রতি মুহূর্তে কৌতুহলটা উদ্রেক হয়।" বলেন অভিনেত্রী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ওয়াহিদা মল্লিক জলি। নারীদের মধ্যে ভারতীয় নাটকের জনপ্রিয়তা বেশি হলেও, পুরুষেরাও যে এতে আকর্ষিত হন না তা নয়। "দেখলাম আমার বাসায় মা আর বোন নিয়মিত দেখছে। তাদের সাথে বসে আমিও দেখা শুরু করলাম। একটা পর্যায়ে দেখলাম আমিও উদগ্রীব হয়ে বসে থাকি যে ভবিষ্যতে কি ঘটবে।"একজন দর্শক সৌমিত্র বড়ুয়া ব্যাখ্যা করছিলেন ভারতীয় নাটকের প্রতি তার আকর্ষণের কারণ। নাটকের নায়িকাদের নামে পোষাকও বিক্রি হয় অনেক দর্শক বলছেন, বাংলাদেশি নাটক ভালো লাগলেও বিজ্ঞাপনের বাড়াবাড়ির কারণে তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। দর্শকদের বিরক্তি সত্ত্বেও চ্যানেলগুলোতে বিজ্ঞাপনের এই আধিক্য কেন? বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশনের অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান শামীম শাহেদ বলেন, "ভারতীয় বাংলা চ্যানেলগুলো দেখার জন্য আমাদের অথবা কেবল অপারেটরদের একটি কার্ড কিনতে হয়। সেই কার্ডের টাকাটা পায় চ্যানেলের মালিক কর্তৃপক্ষ, কিন্তু আমাদের বিজ্ঞাপন ছাড়া আয়ের আর কোন উৎস নেই।" নাটক নির্মাণে বাজেটের অভাবকেও একটি বড় সমস্যা হিসেবে দেখছেন শামীম শাহেদ। অধ্যাপক শফিউল আলম ভুঁইয়া বলছেন, হঠাৎ করে��� টেলিভিশন নাটকের যে চাহিদা তৈরি হয়েছে, সেটি যোগান দেবার মতো অবকাঠামো তৈরি হয়নি। যার ফলাফল, নাটকের মানের অবনতি। "আমাদের এখানে প্রবণতা হচ্ছে কম বিনিয়োগে বেশি নাটক তৈরি করা। চ্যানেল বাড়ার ফলে নাটকের যে চাহিদা তৈরি হয়েছে, সেটি পূরণ করতে গিয়ে যেনতেন জিনিস তৈরি হচ্ছে।" ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা নিয়েলসেনের জরিপে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ টেলিভিশন দেখে এবং সংবাদ ও চলচ্চিত্রের পরই সবচেয়ে বেশি দেখে টেলিভিশন নাটক। উন্নত দেশগুলোতে যখন টেলিভিশনের দর্শক দিনকে দিন কমছে, সেখানে এই চিত্র বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর জন্য বেশ আশাব্যঞ্জক। কিন্তু দর্শকদেরকে ধরে রাখার উপায় খুঁজে বের করতে না পারলে যেমন কঠিন হবে, তেমনি বিদেশী অনুষ্ঠানের সাথে পাল্লা দেয়াটাও দিন-দিন আরো কঠিন হতে পারে। বাংলাদেশে টেলিভিশন দর্শকদের কাছে ভারতীয় বাংলা চ্যানেলগুলো বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম । বিশেষ করে, এই চ্যানেলগুলোর নাটক বাংলাদেশেও জনপ্রিয়। +text: বিএনপির পতাকা আজ শনিবার সকাল ১১টার পর প্রেস ক্লাবের সামনে তারা জড়ো হয়ে বক্তব্য দিতে থাকেন। এর ফলে একপাশের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সমাবেশটি শুরু থেকেই সরাসরি সম্প্রচার করছিল স্থানীয় কিছু গণমাধ্যম। বেলা ১২টার দিকে পুলিশ তাদের সভা শেষ করতে বলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। সে সময়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাদের ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠি চার্জ করে। সেসময় বিএনপির কিছু কর্মী আহত হন। একই সময় বিএনপির কর্মীরা ইট-পাটকেল ছোড়ে। সমাবেশের শুরুতে বিএনপির কর্মীদের নিজেদের মধ্যে একটা ধাওয়া -পাল্টা ধাওয়া হয় । কিন্তু এর পর প্রায় দুই ঘণ্টা তারা সমাবেশ করেন। সমাবেশের শেষের দিকে রাস্তার একটা অংশ ছেড়ে দিতে বলে পুলিশ। আর তখনই পুলিশের সঙ্গ সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটে। আরো পড়ুন: জিয়ার 'বীর উত্তম' খেতাব বাতিলের উদ্যোগে আওয়ামী লীগের লাভ লোকসান জিয়ার খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধ পরিচয় হঠাৎ লক্ষ্যবস্তু কেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। এই সময় বিএনপির সিনিয়র নেতারা প্রেস ক্লাবের মধ্যে চলে যান। যারা আহত হন তাদের আশপাশের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এর কিছু পরে সিনিয়র নেতারা গাড়ীতে করে ঐ স্থান ত্যাগ করেন। বিক্ষোভ কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে ঐ এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে কিছুক্ষণের জন্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যান চলাচল স্বাভাবিক করে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা এবং মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডারদের একজন জিয়াউর রহমানের 'বীর উত্তম' খেতাব বাতিলের সুপারিশ করেছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। এই সিদ্ধান্তের পেছনে কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় জড়িত থাকা এবং রাজাকারদের রাজনীতিতে পুনর্বাসনসহ আরো নানা অভিযোগ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলছেন, এ ব্যাপারে দালিলিক প্রমাণ সংগ্রহ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: নেলসন ম্যান্ডেলা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া: জালায়াতির অভিযোগে দ.আফ্রিকায় গ্রেফতার ১৫ কোরান তেলাওয়াতের ‘অপূর্ব এক কণ্ঠ’ নূরীন মোহামেদ সিদ্দিগ জামিন পেয়েছেন গ্রেফতার হওয়া সিকদার গ্রুপের এমডি জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের প্রতিবাদে ঢাকার প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপি পূর্ব ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করছিল। +text: জাহাজটিতে করে কয়লা পরিবহন করা হতো, যা উত্তর কোরিয়ার প্রধান রপ্তানি পণ্য বিচার বিভাগ বলছে, ওই জাহাজটিতে করে কয়লা পরিবহন করা হতো, যা উত্তর কোরিয়ার প্রধান রপ্তানি পণ্য। তবে দেশটির কয়লা রপ্তানির ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এই প্রথমবারের মতো নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করার কারণে উত্তর কোরিয়ার কোন জাহাজ আটক করলো যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি এই পদক্ষেপ নিয়েছে এমন সময় যখন দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠেছে। এদিকে এক সপ্তাহের কম ব্যবধানে দ্বিতীয় দফা মিসাইল পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। স্বল্প মাত্রার ওই মিসাইল ৪২০ কিলোমিটার অতিক্রম করতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার মিসাইল টেস্টের সঙ্গে এই জাহাজ আটক ঘটনার কোন যোগসূত্র নেই। আরো পড়ুন: পুতিন-কিম শীর্ষ বৈঠক: কার স্বার্থ কোথায় উত্তর কোরিয়ার সাধারণ মানুষ যেভাবে বেঁচে আছেন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিরোধে শেষ ট্রাম্প-কিম বৈঠক সংসদ নির্বাচন: উত্তর কোরিয়া স্টাইল এক সপ্তাহের কম ব্যবধানে দ্বিতীয় দফা মিসাইল পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া জাহাজটি সম্পর্���ে কি জানা যাচ্ছে? 'ওয়াইজ অনেস্ট' নামের ওই জাহাজটিকে ২০১৮ সালের এপ্রিলে প্রথম ইন্দোনেশিয়ায় আটক করা হয়। সে বছর জুলাই মাসে সেটি জব্দ করার আবেদন করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর ইন্দোনেশিয়া জাহাজটিকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেয়। এখন সেটি যুক্তরাষ্ট্রের পথে রয়েছে। মার্কিন কৌসুলি জেফরি এস বের্ম্যান বলছেন, ''আমাদের অফিস জানতে পেরেছে যে, জাহাজের নিবন্ধন গোপন করে উত্তর কোরিয়া উন্নত মানের কয়লা বিদেশী ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছে।'' ''তারা এর মাধ্যমে শুধু নিষেধাজ্ঞাই লঙ্ঘন করেনি, বরং এই জাহাজের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ায় ভারী যন্ত্রপাতি আমদানি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে বার বার নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে।'' এই জাহাজের রক্ষণাবেক্ষণ খরচ মার্কিন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ডলারে দেয়া হতো বলে জানা যাচ্ছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষকে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার নতুন সুযোগ এনে দিয়েছে। পারমাণবিক অস্ত্র ও মিসাইল পরীক্ষার জের ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক অনেক নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়েছে উত্তর কোরিয়া। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: বিমান দুর্ঘটনা: নিরাপত্তার জন্যে কী করছে কর্তৃপক্ষ যুদ্ধজাহাজ নিয়ে রাজীব প্রমোদ ভ্রমণে গিয়েছিলেন? বাজারে ৫২টি খাদ্যপণ্যেই ভেজাল: বিক্রি চলছে গণপরিবহনে নারীর জন্য বিপদ সংকেতগুলো কী? কিম-ট্রাম্প শীর্ষ বৈঠক শেষ পর্যন্ত বিফল হয় উত্তর কোরিয়া আর যুক্তরাষ্ট্র কি আবার বন্ধু হতে পারবে? বর্তমান ঘটনা পর্যালোচনায় ধারণা করা হচ্ছে যে, দুই দেশ আবার চরম বৈরি অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। তবে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে আলোচনা আবার শুরু করার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ায় রয়েছেন উত্তর কোরিয়া বিষয়ক মার্কিন বিশেষ প্রতিনিধি স্টিফেন বিয়েগান। ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার সর্বশেষ মিসাইল টেস্টের ব্যাপারে কেউই 'খুশী' নয়। প্রথমবারের মতো কোন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে গত বছর উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপরে আরো একটি বৈঠক হলেও কোরিয়ান উপসাগরে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের ব্যাপারে কোন অগ্রগতি হয়নি। গত বছর কোরিয়ান নেতা কিম জং-আন বলেছিলেন, তিনি পারমাণবিক কর্মসূচী বন্ধ করে দিতে পারেন এবং আন্তঃমহাদেশীয় অস্ত্র পরীক্ষা করবেন না, তবে সেসব কর্মসূচী বন্ধ হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে যে, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করার অভিযোগে তারা উত্তর কোরিয়ার একটি জাহাজ আটক করেছে। +text: ফেসবুকে প্রকাশ করা আবরার ফাহাদের একটি সেলফি আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের মামলার এজাহারে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাসহ প্রথমে ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল, তবে তদন্তের পরে আসামীর সংখ্যা ২৫ জন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, আসামীদের বিরুদ্ধে মোট তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে, ৩০২ ধারায় নরহত্যা, ৩০২ এর ৩৪ ধারা অনুযায়ী হত্যার পূর্ব-পরিকল্পনা এবং ১০৯ ও১১৪ ধারায় হত্যায় অংশগ্রহণের অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। হত্যার আগে আসামীরা পরিকল্পনা করেছিল যে তারা আবরারকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে এবং মারবে, এক আসামী উদ্বুদ্ধ করেছিল, উদ্বুদ্ধ করার পর তারা সম্মিলিত হয়েছিল, পরে আবরার বাড়ি থেকে আসলে তাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়, তার মোবাইল চেক করা হয় এবং এক পর্যায়ে তাকে মারধর করা হয়। বিবিসিকে বলেন মোশারফ হোসেন কাজল। "এই মামলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল চার্জ গঠন করা। গত দুই দিন চার্জ শুনানি হয়েছে। ২২ জন আসামী শুনানি করেছেন। পলাতক ৩ জনের পক্ষে রাষ্ট্র আইনজীবী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শুনানি শেষে আজ চার্জ গঠন করা হলো।" ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বিচারের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে। আগামী পহেলা অক্টোবর পর্যন্ত সবগুলো কার্যদিবসে একটানা সাক্ষ্যগ্রহণ চলবে। এদিকে আসামী পক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মেদ বলেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা চার্জশিটে যেসব ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছিল সেগুলোই রাখা হয়েছে। আদালতের কাছে এই মামলায় সময় চেয়ে আবেদন করা হলেও তা খারিজ করে দেয়া হয়। তিনি বলেন, চার্জশিটে ঘটনার তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৯ থেকে৭ অক্টোবর উল্লেখ করা হলেও অভিযোগপত্রে এই ঘটনার তারিখ ৪ অক্টোবর ২০১৯ থেকে ধরা হয়েছে। এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে ওই দুই দিন এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। মামলার এজাহারে এই তারিখের উল্লেখ না থাকায় তারা উচ্চ আদালতে এর একটি ফৌজদারি রিভিশন মামলা দায়ের করবেন বলে জানান মি. আহাম্মেদ। তিনি অভিযোগ করেন, মিডিয়াতে ব্যাপক হারে প্রচার হওয়ার কারণে আবরার হত্যা মামলা দ্রুততর করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। ২০১৯ স��লের ৭ই অক্টোবর ভোররাতে আবরার ফাহাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয় বুয়েটের শেরে বাংলা হল থেকে। এর পরপরই ঢাকায় অবস্থিত বাংলাদেশের এই প্রধান প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিচারের দাবিতে আন্দোলনে নামে। আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় সব মিলিয়ে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর চার্জশিট তৈরি করে ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশ। আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ছাত্র বিক্ষোভ হয়। এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে সমাজের নানা শ্রেণী-পেশার মানুষও সোচ্চার হয়েছে। সে প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বা বুয়েট কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনৈতিক সংগঠন এবং ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের মামলায় ২৫ আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে মঙ্গলবার থেকে এই মামলার বিচার শুরু হল। +text: দেহ ব্যবসায় জড়িতদের মধ্যে রয়েছে বহু অল্প বয়সী নারী। আশ্রয়হীন সহায়সম্বলহীন এসব রোহিঙ্গার মধ্যে অনেকেই যৌন সহিংসতার শিকার হচ্ছে বলে এক রিপোর্টে জানাচ্ছেন বিবিসির সংবাদদাতা রিটা চক্রবর্তী । এসম্পর্কে বিবিসির একটি অনুসন্ধানীমূলক রিপোর্ট সম্প্রতি বিবিসির টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে। তিনি জানাচ্ছেন, কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত। দিনের বেলায় এখানে রয়েছে অপূর্ব প্রাকৃতিক শোভা। কিন্তু রাতের বেলা এখানে দেখা যায় ভিন্ন এক দৃশ্য। আর সেটা খুব একটা সম্মানজনক নয়। এখানে রোহিঙ্গা তরুণীদের দেহ ব্যবসায় লাগানো হয়েছে। আর এটা করছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কয়েকজন। সাথে রয়েছে কিছু স্থানীয় বাংলাদেশী। দেহব্যবসার জন্য তাদের বিক্রি করা হচ্ছে। রিটা চক্রবর্তীর সাথে ১৭ বছর বয়সী এক তরুণীর সাথে কথা হয়। তাকে একটি হোটেলে আটকে রেখে জোর করে দেহব্যবসা করাচ্ছে কয়েকজন রোহিঙ্গা। এখানে মেয়েটির অবস্থা যৌন দাসীর মতো। নিরাপত্তার স্বার্থে তার পরিচয় গোপন রাখা হয়। মেয়েটি বলছে, "আমি এখানে কাপড়-চোপড় ধুই। তারা আমাকে দু'বেলা খেতে দেয়। আমি সারাদিন খাটি।" "রাতের বেলা ওরা আমাকে বিছানা থেকে টেনে তোলে। তাদের মুখ ঢাকা থাকে। আমি কান্নাকাটি করলে তারা আমাকে মারধর করে। ছুরি দিয়ে খুন করার ভয় দেখায়। আমার গলা টিপে ধরে।" আরো দেখুন: অবশেষে সু চির সম্মান প্রত্যাহার করল অক্সফোর্ড রাখাইনে ধর্মীয় বৈষম্য হয়নি: মিয়ানমারের সেনা প্রধান বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছে এক রোহিঙ্গা নারী। তরুণীটি বলছে, এজন্য তাকে কোন টাকাপয়সা দেয়া হয় না। আরেকটি মেয়ে, যার বয়স ১৫ বছর, জানায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তার মা'কে গুলি করে হত্যা করার পর সে নৌকায় চড়ে পালিয়ে আসে। নৌকা ভাড়ার জন্য তার শেষ সম্বলটুকু দিয়ে দিতে হয়। এরপর নৌকার মাঝি তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সে বলছে, "আমার কাছ থেকে সোনা গয়না নিয়ে সে আমাকে নৌকায় তুলে নেয়। নৌকার ভেতরে ঢোকার পরই সে আমাকে ধর্ষণ করে।" "আমি বাধা দিলে সে বলে নৌকায় যেতে চাইলে তার কথা শুনতে হবে। আমি তখন খুব কাঁদছিলাম।" বাংলাদেশে পৌঁছানোর পর তার আশ্রয় হয় এক মহিলার ঘরে। তরুণীটি ভেবেছিল ঐ মহিলা তাকে সত্যি সত্যি সাহায্য করছে। কিন্তু এখন ঐ মহিলা এখন তাকে দিয়ে জোর করে দেহব্যবসা করাচ্ছে। প্রতি রাতে তার ঘরে ঢুকছে একাধিক পুরুষ। তরুণীটি বলছে, "তারা মহিলাকে টাকা দেয়। তিনজন এলে আমাকে ২৫০ টাকা দেয়। দুজন এলে দেয় ২০০ টাকা। এসব আমার ভাল লাগে না। আমার খুব ব্যথা লাগে।" "দু'জন বা তিনজন যখন একসাথে আসে। আমি তখন আর সহ্য করতে পারি না। তখন তিনজনের মধ্যে থেকে একজন চলে যায়। তারা আমাকে ওষুধ দিয়ে বলে এটা খাও। ওষুধ খাওয়ার পর আমি আর ব্যথা টের পাই না।" কক্সবাজারের স্থানীয় লোকজন এই দুই তরুণীকে এখন সাহায্য সহযোগিতা করছে। কিন্তু তাদের মতো নিরাশ্রয়, সহায়হীন নারী এখানে রয়েছে অনেক। মিয়ানমারের সহিংসতা ছেড়ে পালিয়ে এসব নারী এসে পড়েছে এক নতুন নরকের মধ্যে। বঙ্গোপসাগরের উপকূলে এধরনের নৌকা দিয়েই রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশে আসে। মিয়ানমার থেকে পালিয়েছে যে ছয় লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা, তারা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশে এলেও এদের মধ্যে অনেকের ভাগ্যেই সেই কাঙ্ক্ষিত নিরাপত্তা জোটেনি। +text: দুর্ঘটনার সময় সেখানে ১৫ জন শ্রমিক ঘুমাচ্ছিলেন। জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার নারায়নপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় এই শ্রমিকদের উপরে কয়লা বহনকারী একটি ট্রাক উল্টে পড়ে। কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ইটের ভাটার এই শ্রমিকেরা সেখানে একটি খুপরি ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। ইটের ভাটায় জ্বালানী হিসেবে ব্যবহারের জন্য কয়লা পৌ���ছে দিতে সেসময় একটি ট্রাক সেখানে প্রবেশ করে। কয়লা নামানোর সময় ট্রাকটি উল্টে ঐ খুপরি ঘরটির উপর গিয়ে পরে। মি. ইসলাম বলছেন, "একসাথে কয়লা ও ট্রাকের নিচের চাপা পড়েন শ্রমিকেরা। কয়লা আর ট্রাকের যে ওজন - এই দুটো মিলিয়ে তারা মারা গেছে।" দুর্ঘটনার সময় সেখানে ১৫ জন শ্রমিক ঘুমাচ্ছিলেন। ঘটনাস্থলেই ১২ জন শ্রমিক মারা যান। অপর একজন হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান। আরও দুইজন আহত অবস্থায় হাসপাতালে রয়েছেন। চালক ঘটনার সাথে সাথে পালিয়ে যায়। শ্রমিকদের পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এখনো দিতে পারেনি পুলিশ। তবে মি. ইসলাম বলছেন উত্তরবঙ্গ থেকে অনেক শ্রমিক এই এলাকায় ইটের ভাটায় কাজের খোঁজে আসেন। নিহতদের স্বজনদের খোঁজ শুরু হয়েছে। মরদেহগুলো কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সংরক্ষণের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান। আরো পড়ুন: ছিন্ন হাতের যে ছবি দেখে আঁতকে উঠেছেন ঢাকাবাসী বাংলাদেশে যে ভিডিও নাড়া দিয়েছে সবাইকে কেন এত আলোড়ন তুলেছে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন? বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলীয় জেলা কুমিল্লায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে ১৩ জন ইটভাটা শ্রমিকের। +text: অধিকাংশ মানুষের জন্যই এই রোগটি খুব ভয়াবহ নয়, কিন্তু অনেকেই মারা যায় এই রোগে। ভাইরাসটি কীভাবে দেহে আক্রমণ করে, কেন করে, কেনই বা কিছু মানুষ এই রোগে মারা যায়? 'ইনকিউবেশন' বা প্রাথমিক লালনকাল এই সময়ে ভাইরাসটি নিজেকে ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠিত করে। আপনার শরীর গঠন করা কোষগুলোর ভেতরে প্রবেশ করে সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়ার মাধ্যমে কাজ করে ভাইরাস। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদেশ ফেরতদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে (ফাইল ফটো) করোনাভাইরাস, যার আনুষ্ঠানিক নাম সার্স-সিওভি-২, আপনার নিশ্বাসের সাথে আপনার দেহে প্রবেশ করতে পারে (আশেপাশে কেউ হাঁচি বা কাশি দিলে) বা ভাইরাস সংক্রমিত কোনো জায়গায় হাত দেয়ার পর আপনার মুখে হাত দিলে। শুরুতে এটি আপনার গলা, শ্বাসনালীগুলো এবং ফুসফুসের কোষে আঘাত করে এবং সেসব জায়গায় করোনার কারখানা তৈরি করে। পরে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নতুন ভাইরাস ছড়িয়ে দেয় এবং আরো কোষকে আক্রান্ত করে। এই শুরুর সময়টাতে আপনি অসুস্থ হবেন না এবং কিছু মানুষের মধ্যে হয়তো উপসর্গও দেখা দেবে না। ইনকিউবেশনের সময়ের - প্রথম সংক্রমণ এবং উপসর্গ দেখা দেয়ার মধ্যবর্তী সময় - স্থায়িত্ব একেকজনের জন্য একেকরকম হয়, কিন্তু গড়ে তা পাঁচদিন। নিরীহ অসুখ অধিকাংশ মানুষের অভিজ্ঞতায় করোনাভাইরাস নিরীহ অসুখই মনে হবে। দশজনে আটজন মানুষের জন্যই কোভিড-১৯ একটি নিরীহ সংক্রমণ এবং এর প্রধান উপসর্গ কাশি ও জ্বর। শরীরে ব্যাথা, গলা ব্যাথা এবং মাথাব্যাথাও হতে পারে, তবে হবেই এমন কোনো কথা নেই। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভাইরাস সংক্রমণ হওয়ায় প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করার ফলে গায়ে জ্বর আসে। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভাইরাসটিকে শত্রুভাবাপন্ন একটি ভাইরাস হিসেবে শনাক্ত করে এবং বাকি শরীরে সাইটোকাইনস নামক কেমিক্যাল পাঠিয়ে বুঝিয়ে দেয় কিছু একটা ঠিক নেই। এর কারণে শরীরে ব্যাথা ও জ্বরের মত উপসর্গ দেখা দেয়। প্রাথমিকভাবে করোনাভাইরাসের কারণে শুষ্ক কাশি হয়। কোষগুলো ভাইরাসের মাধ্যমে সংক্রমিত হওয়ার কারণে অস্বস্তিতে পড়ার কারণে সম্ভবত শুকনো কাশি হয়ে থাকে। তবে অনেকের কাশির সাথেই একটা পর্যায়ে থুতু বা কফ বের হওয়া শুরু করবে যার মধ্যে ভাইরাসের প্রভাবে মৃত ফুসফুসের কোষগুলোও থাকবে। এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে পরিপূর্ণ বিশ্রাম, প্রচুর তরল পান করা এবং প্যারাসিটামল খাওয়ার উপদেশ দেয়া হয়ে থাকে। এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে হাসপাতাল বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়ার প্রয়োজন হয় না। এই ধাপটি এক সপ্তাহের মত স্থায়ী হয়। অধিকাংশ মানুষই এই ধাপের মধ্যেই আরোগ্য লাভ করে কারণ ততদিনে তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভাইরাসের সাথে লড়াই করে সেটিকে প্রতিহত করে ফেলে। তবে কিছু কিছু মানুষের মধ্যে কোভিড-১৯ এর আরো ক্ষতিকর একটি সংষ্করণ তৈরি হয়। এই রোগ সম্পর্কে হওয়া নতুন গবেষণায় ধারণা প্রকাশ করা হয়েছে যে রোগটির এই ধাপে আক্রান্তদের সর্দিও লাগতে পারে। করোনাভাইরাস গাইড: আপনার প্রশ্নের উত্তর করোনাভাইরাস থেকে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন যে পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা যাবে করোনাভাইরাস ভয়াবহ ব্যাধি এই ধাপের পর যদি রোগ অব্যাহত থাকে, তা হবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভাইরাসটি সম্পর্কে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়াশীল হওয়ায়। যেই কেমিক্যালগুলো শরীরে বার্তা পাঠাতে থাকে, সেগুলোর প্রতিক্রিয়া তখন শরীরের বিভিন্ন জায়গায় প্রদাহ হয়। লন্ডনের কিংস কলেজের ডক্টর নাথালি ম্যাকডরমেট বলেন, "রোগ প্���তিরোধ ব্যবস্থায় ভারসাম্য নষ্ট করে দেয় ভাইরাসটি। এর ফলে শরীর অতিরিক্ত মাত্রায় ফুলে যায় শুরু হয়। কীভাবে এটি ঘটছে, তা আমরা এখনো নিশ্চিতভাবে জানি না।" ফুসফুসে প্রদাহ তৈরি হওয়াকে নিউমোনিয়া বলে। আপনার মুখ দিয়ে প্রবেশ করে শ্বাসনালী দিয়ে ফুসফুসের ছোট টিউবগুলোয় যদি যাওয়া যেত, তাহলে আপনি হয়তো শেষপর্যন্ত ক্ষুদ্র আকারের বায়ুথলিতে গিয়ে পৌঁছাতেন। এই থলিগুলোতেই রক্তে অক্সিজেন যায় এবং কার্বন ডাই অক্সাইড বের হয়। কিন্তু নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে এই ক্ষুদ্র থলিগুলো পানি দিয়ে ভর্তি হতে শুরু করে এবং ফলস্বরুপ শ্বাস নিতে অস্বস্তি তৈরি করা, শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যার মত উপসর্গ তৈরি করে। কিছু মানুষের শ্বাস নিতে ভেন্টিলেটরও প্রয়োজন হয়। চীন থেকে পাওয়া তথ্য উপাত্ত অনুযায়ী, এই ধাপে ১৪% মানুষ আক্রান্ত হয়। করোনাভাইরাস আক্রান্ত ফুসফুসের স্ক্যান, নিউমোনিয়া আক্রান্ত অংশ চিহ্নিত করা রয়েছে অতি জটিল রোগ এখন পর্যন্ত ধারণা করা হচ্ছে যে প্রায় ৬% করোনাআক্রান্ত ব্যক্তির রোগ অতি জটিল পর্যায়ে যায়। এই ধাপে শরীর স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে অসক্ষম হয় এবং মৃত্যুর বড় ধরনের সম্ভাবনা তৈরি হয়। মূল সমস্যাটা হয়, এই ধাপে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে শুরু করে এবং সারা শরীরেই বিভিন্ন রকম ক্ষয়ক্ষতি তৈরি করে। রক্তচাপ যখন মারাত্মকভাবে নেমে যায় তখন এই ধাপে সেপটিক শক পেতে পারেন আক্রান্ত ব্যক্তি, এমনকি তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাজ করা বন্ধ হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। শ্বাস-প্রশ্বাসে তীব্র সমস্যা হওয়ার উপসর্গ দেখা দেয় ফুসফুসে প্রদাহ ছড়িয়ে পড়লে, কারণ সেসময় শরীরকে টিকিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট অক্সিজেন পুরো শরীরে প্রবাহিত হতে পারে না। এর ফলে কিডনি রক্ত পরিশোধন ছেড়ে দিতে পারে এবং অন্ত্রের দেয়াল ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। ডাক্তার ভারত পঙ্খানিয়া বলেন, "ভাইরাসটি এত বড় পরিসরে প্রদাহ তৈরি করে যে শরীর পুরো ভেঙ্গে পড়ে, একসাথে একাধিক অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ফেইল করে।" এ পর্যায়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যদি ভাইরাসের সাথে পেরে না ওঠে তাহলে তা শরীরের সব প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে এবং আরো বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরি করে। এ পর্যায়ে আক্রান্তকে চিকিৎসা দিতে ইসিএমও বা এক্সট্রা-কোর্পোরেয়াল মেমব্রেন অক্সিজেনেশন পদ্ধতি ব্যবহার করা হতে পা��ে। এই পদ্ধতিতে একটি কৃত্রিম ফুসফুস দ্বারা টিউবের মাধ্যমে শরীর থেকে রক্ত বের করে নিয়ে সেই রক্ত অক্সিজেনপূর্ণ করে আবার শরীরে প্রবেশ করানো হয়। তবে ক্ষতির মাত্রা বেশি হলে কখনো কখনো অঙ্গ প্রত্যঙ্গ শরীরকে আর বাঁচিয়ে রাখতে সক্ষম হয় না। ইসিএমও মেশিন দিয়ে এক রোগীর চিকিৎসা করা হচ্ছে প্রথম মৃত্যু চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করার পরও অনেকসময় রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। চীনের উহান শহরের জিনইনতান হাসপাতালে মারা যাওয়া প্রথম দু'জন আপাতদৃষ্টিতে স্বাস্থ্যবান ব্যক্তি ছিলেন, যদিও তারা দু'জনই দীর্ঘসময় ধরে ধূমপান করতেন। প্রথম যিনি মারা গিয়েছিলেন, ৬১ বছর বয়সী এক পুরুষ, তিনি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময় তার তীব্র নিউমোনিয়া ছিল। তার শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা ছিল, এবং ভেন্টিলেটরে রাখা হলেও তার ফুসফুস বিকল হয়ে যায় এবং হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যায়। হাসপাতালে ১১ দিন থাকার পর ঐ ব্যক্তি মারা যান। ৬৯ বছর বয়সী দ্বিতীয় যে ব্যক্তি মারা যান তারও শ্বাস প্রশ্বাসে ব্যাপক সমস্যা ছিল। তাকেও একটি ইসিএমও মেশিনের সহায়তা দেয়া হয়, কিন্তু তবুও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। রক্তচাপ কমে যাওয়ার পর তীব্র নিউমোনিয়া ও সেপটিক শকে মারা যান তিনি। গত বছরের ডিসেম্বরে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রথম জানা গেলেও এরই মধ্যে এই ভাইরাস এবং এর ফলে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ এর মহামারি সামাল দিতে হচ্ছে বিশ্বকে। +text: "ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়লেও, বাড়েনি সচেতনতা" অথচ গত বছরের এপ্রিলে সরকারি কাজে জি মেইল, ইয়াহুসহ অন্যান্য ডোমেইনের ইমেইল সেবা ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করেছিল সরকার। সরকারি ডোমেইনযুক্ত ইমেইল ব্যবহারের বিষয়ে মন্ত্রীসভায় একটি খসড়া নীতিমালারও অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। তারপরও গত সপ্তাহে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের একটি চিঠিতে নির্দিষ্ট কয়েকজন শিক্ষকের নাম ও তাদের চাকরি সংশ্লিষ্ট কিছু তথ্য চাওয়া হয় এবং তথ্য পাঠানোর জন্য সেখানে দেয়া হয় একটি ব্যক্তিগত জিমেইল অ্যাকাউন্ট। সরকারি দফতরে তথ্য পাঠাতে দেয়া হয়েছে জিমেইল অ্যাকাউন্ট আরও পড়তে পারেন: ফেসবুকে অ্যাপ ব্যবহার করে নিজেকে বিপদে ফেলছেন না-তো? বিশ্বব্যাপী সাইবার হামলার একের পর এক অভিযোগ আসছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যানবাহনে ইমেইল করলে ‘কাজ হিসেবে গণ্য করা উচিত’ সরকারি ���মেইল থাকা সত্ত্বেও এই ব্যক্তিগত ইমেইল ব্যবহারে সমস্যার কিছু দেখছেন না ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুর রউফ। বিবিসি বাংলাকে তিনি জানান, "সরকারি ওয়েবসাইটে হাজারো ডকুমেন্ট আছে। সেগুলো আরেকজনকে দিয়ে খুঁজতে হয়। যে তথ্যগুলো আমরা চাচ্ছি, সেগুলো লিক হলেও কিছু আসে যায় না। পাবলিকলি এগুলো প্রচার হলেও কোন সমস্যা নাই।" এতে ঝুঁকির আশঙ্কা আছে? সরকারি প্রতিটি দফতরের ওয়েবসাইটেও অধিকাংশ কর্মকর্তা কর্মচারীর ইমেইল আইডি হিসেবে তাদের ব্যক্তিগত ইমেইল অ্যাকাউন্ট দিতে দেখা যায়। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের তথ্য চুরির ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা এবং প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানজিয়া খানম। "জিমেইল, ইয়াহু এই ডোমেইনগুলো হল বিদেশি থার্ড পার্টি । তাদের ডোমেইনে আদান প্রদান করা সব ইমেইল ওদের ডাটাবেজ বা সার্ভারে জমা হয়ে যায়।এতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ তথ্যগুলো বাইরে চলে যাচ্ছে। এতে তো ঝুঁকি থাকেই।" "কিন্তু সবাই যদি সরকারি সার্ভার ব্যবহার করে তাহলে দেশের ভেতরেই তথ্যটা থেকে যাচ্ছে। এটা ওই জিমেইল বা ইয়াহুর চাইতে অনেক নিরাপদ।" সরকারি দফতরের ওয়েবসাইটে অধিকাংশ কর্মকর্তা কর্মচারীদের ব্যক্তিগত ইমেইল অ্যাকাউন্ট দেয়া আছে। এর পেছনে দায়ী কে বা কারা? এরপরও ব্যক্তিগত ইমেইলের ব্যবহার বন্ধ না হওয়ার পেছনে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের সদিচ্ছা ও সচেতনতার অভাবকে দায়ী করছেন জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহমেদ। তিনি বলেন, "নতুন প্রযুক্তির প্রতি মানুষ এখনও অভ্যস্থ হয়ে ওঠেনি। এজন্য হয়তো সময় লাগছে। তবে সরকারি কাজে সরকারি ডোমেইনই ব্যবহার করতে হবে। তারপরও কেউ ব্যক্তিগত ইমেইল ব্যবহার করলে জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে।" তবে সরকারি দফতরের অনেক কর্মকর্তা জানান তারা ওই প্রজ্ঞাপনের ব্যাপারে কিছুই জানেন না। কিন্তু এভাবে কিছু জানি না বলে কেউ দায় এড়াতে পারবে না বলে সতর্ক করেছেন মিস্টার আহমেদ। তিনি বলেন, "সচিবালয়ের নির্দেশনায় সব বলা আছে। তারপরও যারা বলবে এ বিষয়ে তারা কিছু জানেনা, তাদের ছাড় দেয়া হবে না। দায় তাদেরকে নিতেই হবে। এছাড়া সুপারভাইজিং অথরিটিও রেসপন্সিবল হবেন।" ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। কি বললেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী: সরকারি এই ইমেইলের কাঠামো প্রস্তুত করেছে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)। এই ইমেইল কাঠামোটি জিমেইল বা ইয়াহুর মতোই যথেষ্ট দ্রুত, আধুনিক ও ইউজার ফ্রেন্ডলি বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। তারপরও সরকারি ইমেইলের ব্যবহারকে আরও সহজ করতে কিছু পরিকল্পনা হাতে নেয়ার কথা জানান তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, " আমরা চেষ্টা করছি সরকারি সফটওয়্যারগুলো এমনভাবে ডিজাইন করতে যেন সেগুলো ইউজার ফ্রেন্ডলি হয়। সবাই যেন নিজেদের স্মার্টফোনেও এই ইমেইলের অ্যাকসেস পায়।" এতে শিগগিরই দেশের সব সরকারি দফতরে সরকারি ডোমেইনের ইমেইল ব্যবহার শতভাগ নিশ্চিত করা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যক্তিগত বিজ্ঞপ্তি পাঠাতে ব্যবহার হয়েছে সরকারি ইমেইল অ্যাকাউন্ট। প্রজ্ঞাপনে কি বলা হয়েছিল? সরকারি ও প্রজ্ঞাপনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরকারি ইমেইলের পাসওয়ার্ড অন্য কাউকে না জানানো, ছয় মাসে অন্তত একবার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন, ইমেইলের মাধ্যমে ব্যক্তিগত, আপত্তিকর বা আক্রমণাত্মক কন্টেন্ট আদান প্রদান না করা ইত্যাদি আরও নানা বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়। তারপরও তথ্যের এই নিরাপত্তার বিষয়টি পুরোপুরি কর্মকর্তা কর্মচারীদের সচেতনতার ওপর নির্ভর করে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার। তিনি বলেন, "তথ্যের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বলেই একে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এ নিয়ে প্রযুক্তিগত ও আইনী কাঠামো রয়েছে, সেই কাঠামোয় কোন সমস্যা হলে আমরা খতিয়ে দেখবো, কিন্তু এর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে প্রশাসনকে।" বাংলাদেশে সরকারি কাজের গোপনীয়তা রক্ষা ও সাইবার নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সকল সরকারি দাপ্তরিক কাজে gov.bd ডোমেইন যুক্ত ইমেইল ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হলেও সেই নির্দেশনা মানছেন না বেশিরভাগ সরকারি কর্মকর্তা। +text: গাজা থেকে ফিরছে ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক। আগস্ট, ২০১৪ নিউ ইয়র্কে ভারতের কনসাল জেনারেল সন্দীপ চক্রবর্তীকে একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানে বলতে শোনা গেছে, অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে যেভাবে ইসরায়েল ইহুদি বসতি গড়ে তুলেছে, ভারতেরও উচিত হবে সেভাবেই কাশ্মীরে হিন্দু পন্ডিতদের জন্য বসতি গড়ে তোলা। তার সেই বক্ত���তার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়ার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান একে ভারতের 'ফ্যাসিবাদী মানসিকতা'র দৃষ্টান্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন। যদিও ওই কূটনীতিবিদ দাবি করছেন তার মন্তব্য 'আউট অব কনটেক্সট' বা প্রসঙ্গ-বহির্ভূতভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। নিউ ইয়র্কে ভারতের কনসাল জেনারেল সন্দীপ চক্রবর্তী নিউ ইয়র্কে ভারতের শীর্ষ ডিপ্লোম্যাট সন্দীপ চক্রবর্তী ফরেন সার্ভিসের একজন পোড়খাওয়া কর্মকর্তা, আমেরিকার আগে তিনি পেরুতে ভারতের রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশেও উপরাষ্ট্রদূত পদে ছিলেন। দিনদুয়েক আগে নিউ ইয়র্কে তিনি কাশ্মীরি পন্ডিতদের একটি ঘরোয়া বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দিচ্ছিলেন, যেখানে অন্যান্যদের সঙ্গে বলিউড অভিনেতা অনুপম খের ও পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীও উপস্থিত ছিলেন। পরে বিবেক অগ্নিহোত্রী নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সেই ভাষণের প্রায় ঘন্টাখানেকের ভিডিও পোস্ট করামাত্র তা নিয়ে তুমুল হইচই শুরু হয়ে যায়। কাশ্মীর থেকে বিতাড়িত হিন্দু পন্ডিতদের ভ্যালিতে ফেরানোর প্রসঙ্গে সেখানে মি চক্রবর্তীকে বলতে শোনা যায়, "আমি জানি না এখানে আমরা কেন ইসরায়েলি মডেল অনুসরণ করছি না, মধ্যপ্রাচ্যে তো এই মডেল সফল হয়েছে।" আরো পড়তে পারেন: কাশ্মীর: ১০০ দিন পর কতোটা স্বাভাবিক জনজীবন কাশ্মীর: সর্বনাশের ঝুঁকি, তবুও বাকি বিশ্বের অনীহা কাশ্মীরে নিরাপদ পুনর্বাসনের দাবিতে দিল্লিতে হিন্দু পন্ডিতদের সমাবেশ। জানুয়ারি, ২০১৯ "প্রাণভয়ে যে পণ্ডিতরা ভ্যালিতে ফিরছেন না, তাদের জন্য ‌ইহুদি সেটলমেন্টের ধাঁচে সেখানে নিরাপদ বসতি গড়ে তুলতে হবে।" "ইসরায়েলিরা যদি পারে, আমরাও পারব - নিজেদের প্রতিশ্রুত ভূখণ্ডের বাইরে দুহাজার বছর থাকার পরও তারা নিজেদের সংস্কৃতি ধরে রেখেছে।" "আমাদেরও মনে রাখতে হবে কাশ্মীরি সংস্কৃতি হল ভারতের সংস্কৃতি, হিন্দু সংস্কৃতি।" তিনি আরো বলেছেন, হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠদের শক্তিকে ভারত কাশ্মীরে কখনও ব্যবহারই করেনি। মি চক্রবর্তী বলেছেন, "ভারত এতদিন যেভাবে সব ধর্মকে মর্যাদা দিয়ে এসেছে সেটাও এখন বন্ধ করার সময় এসেছে।" এই খবর সামনে আসার কিছুক্ষণ পরেই এই সংক্রান্ত একটি খবরের লিঙ্ক দিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ওই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেন। তিনি টুইট করেন, "এই বক্তব্যে আরএসএস আদর্শে পুষ্ট ভারত সরকারের ফ্যাসিব���দী মানসিকতারই প্রতিফলন ঘটেছে - যারা কাশ্মীরকে আজ একশো দিনেরও বেশি হল অবরুদ্ধ করে রেখেছে"। মি চক্রবর্তী নিজে বুধবার রাতে টুইট করেন, "আমার সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে কিছু মন্তব্য চোখে পড়েছে, কিন্তু আমার মন্তব্যকে এখানে ভিন্ন প্রসঙ্গে তুলে ধরা হচ্ছে।" কাশ্মীরে পন্ডিতদের আলাদা বসতি গড়ার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে শ্রীনগরে হুরিয়তের প্রতিবাদ। জুন, ২০১৯ ভারতে শাসক বিজেপির শরিক জনতা দল ইউনাইটেডের নেতা, সাবেক এমপি ও কূটনীতিবিদ পবন ভার্মা মনে করছেন, মি চক্রবর্তীর কাছ থেকে এ ধরনের মন্তব্য আদৌ কাঙ্ক্ষিত নয়। মি ভার্মার যুক্তি, "ইসরায়েলের পটভূমিতে কাশ্মীর ও গাজার তুলনাটাই আসলে ভুল বলে আমি মনে করি - কারণ কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, কাশ্মীরের সব লোক ভারতেরই নাগরিক।" "কাশ্মীরি পন্ডিতদের অবশ্যই ভ্যালিতে ফেরার অধিকার আছে, কিন্তু এটা তো ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ফলে কাশ্মীরের প্রসঙ্গে ইসরায়েলের সঙ্গে তুলনা টানায় সংযম দেখানোটাই বাঞ্ছনীয়", বলছেন তিনি। জাতিসংঘ তথা আন্তর্জাতিক বিশ্ব ফিলিস্তিনকে 'অধিকৃত এলাকা' হিসেবে মেনে নিলেও কাশ্মীর কিন্তু তাদের চোখে এখনও 'বিতর্কিত ভূখন্ড', তার বেশি কিছু নয়। সাবেক কূটনীতিবিদ, এমপি ও জেডি-ইউ দলের নেতা পবন ভার্মা কিন্তু কাশ্মীরেও 'ইসরায়েল মডেল' প্রয়োগের কথা উঠলে অবধারিতভাবে প্রশ্ন উঠবে, ভারতও কি ওই এলাকাটি জোর করে দখল করে রেখেছে? বস্তুত ভারত সরকারেরও ঘোষিত অবস্থান হল তারা জর্দান নদীর পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি স্থাপনের নিন্দা করে। এই কারণেই শীর্ষস্থানীয় বিজেপি নেতারা কেউই এখনও সন্দীপ চক্রবর্তীর বক্তব্যের সমর্থনে প্রকাশ্যে এগিয়ে আসেননি, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও তা বেশ অস্বস্তিতে ফেলেছে। কূটনৈতিক বিশ্লেষক দীনেশ কে ভোহরাও বিবিসিকে বলেছেন, "এমন বিপজ্জনক আইডিয়া থেকে দূরে থাকাই ভাল। এই ধরনের ভাবনার লোকজন যদি বিদেশে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন, তাতে আমাদের মুশকিলই বাড়বে।" "একেই ধর্মীয় অসহিষ্ণুতাসহ নানা কারণে ভারতের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে, তার ওপর এসব কথা বললে কী লাভ হবে?" "ভারত কখনওই ইসরায়েল নয়, হওয়াও উচিত নয় - এটা অবশ্যই মনে রাখতে হবে।" বর্তমান বিজেপি সরকারের আমলে ভারতের সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক ঘনিষ্ঠতা অনেক বেড়েছে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু পর্যব��ক্ষকদের অনেকেই বলছেন, গাজা বা পশ্চিম তীরে ইসরায়েল যা করছে কাশ্মীরেও তা করার উপায় নেই। ভারতীয় সেনাবাহিনী আরো পড়তে পারেন: নুসরাতের ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার সাবেক ওসির জেল মোবাইল অ্যাপ কীভাবে ধান ক্রয়ে দুর্নীতি ঠেকাবে মাথায় বলের আঘাত মারাত্মক কি না বোঝার উপায় কাশ্মীরেও তথাকথিত 'ইসরায়েল মডেল' প্রয়োগ করার পক্ষে সওয়াল করে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন ভারতের একজন শীর্ষ কূটনীতিক। +text: সীমান্ত এলাকায় রাস্তা নির্মাণ ভারত-চীন উত্তেজনা সৃষ্টির একটা কারণ মস্কোতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর এবং চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-র মধ্যে এক দীর্ঘ বৈঠকের পর দুদেশের সেনাবাহিনীকে মুখোমুখি অবস্থান থেকে সরিয়ে আনার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও, এর আগে পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের গরম গরম কথাবার্তায় উত্তেজনা বেড়ে যাবার আভাসই পাওয়া যাচ্ছিল। সপ্তাহের গোড়ার দিকে চীনা সরকার নিয়ন্ত্রিত দৈনিক গ্লোবাল টাইমস বলেছিল, "চীনা সৈন্যরা ভারতীয় সেনাদের ওপর দ্রুতই এক মারাত্মক আঘাত হানবে এবং তারা সব নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। " ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও বলেছিলেন, ভারত তার আঞ্চলিক অখন্ডতা রক্ষা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং এ নিয়ে কোন সন্দেহ থাকা উচিত নয়। সীমান্তের অবস্থাও ছিল তেমনি। চীন দাবি করে কয়েকদিন আগে ভারতীয় সৈন্যরা 'উস্কানিমূলকভাবে' গুলিবর্ষণ করেছিল, এবং চীন তখন পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে - যদিও কী সেই ব্যবস্থা তা বলা হয়নি। ভারতীয় পক্ষ দাবি করে, চীনই ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছিল। তার আগে জুন মাসে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় লাঠি এবং পাথর নিয়ে দু দেশের বাহিনীর এক মারাত্মক সংঘর্ষ হয়, যাতে ২০ জন ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়। সীমান্তে এখনও দু দেশের বিপুল পরিমাণ সৈন্য মোতায়েন করা আছে। তবে হঠাৎ ঠিক কি কারণে দু দেশ উত্তেজনা প্রশমনে একমত হলো - যা কেউই ঘটবে বলে ভাবেননি? 'বরফ-ভাঙা' দূত উইলসন সেন্টার নামের থিংক ট্যাংকের উপপরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান এবং অন্য বিশেষজ্ঞরা অনেকেই ধারণা করছিলেন যে দু'দেশই একটা সংঘাতের জন্য তৈরি ছিল, তবে তারা এটাও বুঝেছিল যে যদ্ধ কোন বিকল্প নয় এমনকি তা সীমিত আকারে হলেও। ভারত-চীন সীমান্ত ২১০০ মাইল লম্বা "যুদ্ধ হলে তা দুদেশের জন্যই বিপর্যয়কর পরিণতি ডেকে আনতো, এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে ঝুঁকিটা ছিল খুবই বেশি" - বলছিলেন মি. কু��েলম্যান। তিনি বলছিলেন, মি জয়শংকর অনেক বছর ধরে বেইজিংএ ভারতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন এবং চীনা কূটনীতিকদের সাথে তার ভালো সম্পর্কের কথা অনেকেই জানেন। এটা বরফ গলাতে সহায়ক হয়েছে। তার কথায়, কূটনীতিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সময় ব্যক্তিগত সম্পর্ক একটা ভূমিকা পালন করে। আবহাওয়াও হয়তো একটা ভূমিকা পালন করেছে শীতকালে গালওয়ান উপত্যকা উঁচু এলাকাগুলোর পরিবেশ খুবই প্রতিকুল হয়ে ওঠে। অনেকে হয়তো এদিকটার কথা ভাবেননি, কিন্তু আবহাওয়াও সম্ভবত একটা ভূমিকা পালন করেছে। ভারতের সেনাবাহিনীর সাবেক একজন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) বিনোদ ভাটিয়া বলছেন, সৈন্যরা প্রতিকূল পরিবেশে থাকতে অভ্যস্ত কিন্তু সুযোগ থাকলে সৈন্যরা এমন পরিস্থিতি এড়িয়ে যেতে চায়। কিছু খবরে জানা যায়, ভারতীয় সৈন্যরা সম্প্রতি কিছু উঁচু এলাকার দখল নিয়েছিল যেখান থেকে চীনা ফাঁড়িগুলো দেখা যায়।কোন দেশই এটা সরকারিভাবে নিশ্চিত করেনি। লে, জেনারেল ভাটিয়া বলছেন - হয়ত ভারত দরকষাকষি করার জন্য এটাকে ব্যবহার করেছে। দুটি দেশই অন্য বহু সংকট মোকাবিলা করছে। ভারতে কোভিড-১৯ সংক্রমণ উদ্বেগজনকভাবে ছড়াচ্ছে এবং এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে। প্যাংগং লেক কোন একটা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে তা এসব ইস্যু মোকাবিলার পথে বিরাট বাধা সৃষ্টি করতো। অন্যদিকে চীন এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেকগুলো দেশের সাথে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা মোকাবিলা করছে। হংকংএ তারা যে বিতর্কিত নিরাপত্তা আইন করেছে তা-ও বিশ্বব্যাপী নিন্দিত হয়েছে। শান্তি পুনপ্রতিষ্ঠার জন্য কত সময় লাগবে? বিশ্লেষকরা বলেন, এর কোন পূর্বাভাস দেয়া খুব কঠিন। ওয়াশিংটনের স্টিমসন সেন্টার নামে থিংক ট্যাংকের চীন বিশেষজ্ঞ ইউন সান বলছেন, মস্কোর আলোচনার পর যে যৌথ ঘোষণা দেয়া হয়েছে তাতে খুঁটিনাটি অনেক কিছুরই উল্লেখ নেই। এতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বা লাইন অব এ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলএর কথা বলা হয়নি। অথচ এটিই কার্যত দু দেশের মধ্যেকার সীমান্ত এবং এলএসির অনেক জায়গা আছে যেগুলো বিতর্কিত, এবং সেখানে এখনো সেনা মোতায়েন করা আছে - বলছিলেন তিনি। লে, জে. ভাটিয়াও বলছিলেন, উত্তেজনা প্রশমনের জন্য সময় লাগে অনেক, এ ক্ষেত্রেও লাগবে। "এটি বিশাল এক এলাকা, সেনা কমান্ডারদের ব্যাপারটা বুঝতে সময় লাগবে। সামরিক স্তরের আলোচনাগুলো হবে এমন সময় সময় যখন উত্তেজনা বিরাজমান, এবং দু-পক্ষেই কাঁচা আবেগ কাজ করছে।" চীন সীমান্তে একজন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী সেনা দু পক্ষই চাইছে স্ট্যাটাস কো অর্থাৎ স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে। কিন্তু মিজ ইউন বলছেন, ব্যাপারটা সহজ নয়, কারণ দু পক্ষের চোখে স্ট্যাটাসকোর সংজ্ঞা দু রকমের। যেসব এলাকা ভারত তাদের বলে দাবি করে, চীনা সৈন্যরা সেসব জায়গা অনেক ভেতরে ঢুকে বসে আছে। তারা সেই জায়গাগুলো ছেড়ে যাবে কিনা - সে ব্যাপারে স্পষ্ট কিছুই বলা হয়নি। বলা হয়, দুদেশের মধ্যে উত্তেজনার উৎস হচ্ছে একটি নতুন রাস্তা যা ভারতীয় সৈন্যদের শিবিরগুলোকে একটি বিমানঘাঁটির সাথে যুক্ত করবে। কিন্তু মিজ ইউন বলছেন, এটা একমাত্র কারণ হতে পারে না, কারণ এটা ২০ বছর ধরে তৈরি হচ্ছিল এবং কোন গোপন ব্যাপার ছিল না। তিনি মনে করেন, ভারত যে এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ওই অঞ্চলের বিশেষ মর্যাদা দানকারী আইনটি বিলুপ্ত করেছে, এবং দিল্লি-ওয়াশিংটন সম্পর্ক উন্নত হচ্ছে - তা এই সংঘাতের পেছনে একটা ভূমিকা পালন করেছে। মিজ ইউন বলছেন, বেইজিং মনে করেছিল, ভারতকে একটা শাস্তি দিলে দিল্লি ও ওয়াশিংটন উভয়কেই একই সাথে একটা বার্তা দেয়া হবে। তবে ভারত যে পিছিয়ে যাবে না তা চীনের হিসেবের মধ্যে ছিল না। চীন সম্প্রতি করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে অনেকগুলো দেশের সাথে কূটনৈতিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। একারণে তারা আগের চাইতে বেশি আক্রমণাত্মক আচরণ করছে, এবং সাম্প্রতিক মাসগুলোগুলোতে আক্রমণাত্মক মনোভাবটা চীনের পররাষ্ট্রনীতির একটা বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছে বলে মিজ ইউন বলছেন। তিনি বলছেন, বেজিংএর কর্মকর্তাদের বিবৃতিগুলোতে এই আক্রমণাত্মক মনোভাব প্রতিফলিত হচ্ছে, চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়াও প্রায়ই তাদের শ্রেয়তর সামরিক শক্তির কথা প্রতিবেশীদের মনে করিয়ে দিচ্ছে। ভারতের সাথে সংঘাতের ক্ষেত্রেও গত কিছুদিনে এ প্রবণতা দেখা গেছে। গালওয়ানের সংঘাতে ভারতীয় সৈন্য নিহত হলেও জুন-জুলাই মাসে দিল্লি ও চীনের ভাষা সংযতই ছিল। মি. কুগেলম্যান বলেন, এর কারণ হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দুদেশের সম্পর্ক উন্নত করার যে চেষ্টা চালাচ্ছেন - তা বানচাল করতে তারা চায়নি। তার কথায়, এটা এখন দেখার বিষয় হবে যে চীন ও ভারত ব্যাপারটা কীভাবে তাদের জনগণের কাছে তুলে ধরে। মিজ ইউন বলেন, হয়ত চীনের জন্য গরম গরম ভাষার পরিবর্তন আনাটা ব্য���পারটা একটু কঠিন হতে পারে কারণ তারা ভারতের বিপক্ষে দুর্বল বলে চিত্রিত হতে চাইবে না। ভারত-চীন সীমান্ত বিবাদ বহু দশকের পুরোনো, তাই তা দু'দিনে মিটে যাবে এমন নয়। তবে সূচনা হিসেবে এটা খারাপ নয়, বলছেন মি. কুগেলম্যান। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: সীমান্তে 'উস্কানিমূলক' গুলি ছুঁড়েছে ভারত, দাবি করছে চীন চীন-ভারত সীমান্ত বিরোধের পেছনে যেসব কারণ চীন-ভারত সংঘাত: কার শক্তি কতটা, কোন্‌ দেশ কার পক্ষ নেবে 'ভারত-চীনের সীমান্ত পুরোটাই মায়া, এলএসি আছে অন্তত চারটে' ভারত আর চীন যেমন দ্রুততার সাথে হিমালয় এলাকায় তাদের সীমান্তে উত্তেজনা কমিয়ে আনার পদক্ষেপ নিয়েছে তা অনেককেই অবাক করেছে। +text: দিল্লির আকবর রোড কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠন বজরং দলের বেশ কিছু সদস্য আজ (বুধবার) আকবর রোডের নাম মুছে দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে অবশ্য দিল্লির পুর কর্তৃপক্ষ রাস্তার আগের নামই ফিরিয়ে দিয়েছে। ক্ষমতাসীন বিজেপিরও বেশ কিছু নেতা বহুদিন ধরেই আকবর রোডের নাম বদলের দাবি জানিয়ে আসছেন। প্রায় সাড়ে চারশো বছর আগে হলদিঘাটের যুদ্ধে মুঘল সম্রাট আকবরের কাছে পরাস্ত হয়েছিলেন চিতোরের রাজা মহারানা প্রতাপ। সেই আকবরের নামে কেন দিল্লির বুকে একটি রাজপথ থাকবে, এ নিয়ে বেশ কিছু রাজপুত ও হিন্দু সংগঠন কিছুদিন ধরেই আপত্তি জানিয়ে আসছে। বুধবার সকালে রানা প্রতাপের জন্মজয়ন্তীতে তারা নিজেরাই আইন হাতে তুলে নেয়। বজরং দলের সদস্যরা আকবর রোডের সব নামফলক বদলে দিয়ে জানায়, "যে মুসলিম শাসকরা ভারতকে আক্রমণ করে লুন্ঠন করেছেন তাদের নাম দিল্লি থেকে মুছে দেওয়া হবে। এটা রানা প্রতাপের দেশে, অতএব তার নামই থাকবে।" আকবর রোড দিল্লির একটি আইকনিক রোডই শুধু নয়, প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সদর দফতরও এই রাস্তার ওপরেই। শীর্ষ কংগ্রেস নেতারা এই পদক্ষেপের কড়া নিন্দা করেছেন। কংগ্রেস নেতা রাজ বব্বর বলেন, "আমাদের দেশের সমৃদ্ধ ইতিহাসের সঙ্গে এভাবে ছেলেখেলা করা কিছুতেই মানা যায় না।" এমপি রেনুকা চৌধুরীর আক্ষেপ, সব কাজ ফেলে শাসক দল কেন রাস্তার নাম বদলানোর পেছনে পড়েছে এটাই তার মাথায় ঢুকছে না। সমাজ সংস্কারক এবং ধর্ম-নিরপেক্ষ হিসাবে সম্রাট আকবর ভারতের ইতিহাসে কিংবদন্তি হয়ে রয়েছেন। তাকে নিয়ে তৈরি চলচ্চিত্র যোধা -আকবরের পোস্টার। বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী এর আগেই বলেছেন, কেন্দ্রীয় দিল্লিতে ৩৫ শতা��শ রাস্তাই না কি মুসলিম শাসকদের নামে, যা অবিলম্বে পাল্টানো দরকার। হরিয়ানার বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভি কে সিং পর্যন্ত আকবর রোডের নাম বদলের প্রস্তাব দিয়েছেন। এর আগে বিজেপি সরকার দিল্লিতে আওরঙ্গজেব রোডের নামও বদলেছে। সমাজবাদী পার্টির মুনাব্বর সেলিমের মতে মুঘল বাদশাহদের মধ্যে শুধু আকবরকেই ভারত আজও সম্রাট নামে চেনে, কারণ তার মতো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তাবহ আর কেউই ছিলেন না। "মহারানা প্রতাপও ভারতের মহান বীরত্বের প্রতীক। কিন্তু এত বড় ভারতে তার নামে রাখার মতো আর কোথাও কোনও রাস্তা মিলবে না, এই আকবর রোডের নামই বদলাতে হবে - এটা কি হতে পারে?" - প্রশ্ন তুলছেন তিনি। কিন্তু আজকের বিজেপি-শাসিত ভারতে নামবদলের চেষ্টায় কোপ পড়ছে সব মুসলিম রাজাবাদশাহদের ওপরেই - তাতে রেহাই পাচ্ছেন না আকবরও। ভারতের রাজধানী দিল্লির বুকে মুঘল সম্রাট আকবরের নামাঙ্কিত একটি প্রধান রাস্তার নাম জোর করে বদলে দিয়ে সমসাময়িক রাজপুত হিন্দু রাজা বীর মহারানা প্রতাপের নামে রাখার চেষ্টা হয়েছে। +text: অসহনশীলতা থেকে বেশ কয়েকটি গণপিটুনির ঘটনাও ঘটেছে বাংলাদেশে গত অক্টোবরে নিজের সাথে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনার কথা বলতে গিয়ে তানিয়া নূর জানান, রাজধানীর তেজগাঁ এলাকায় গাড়ি করে যাচ্ছিলেন। গন্তব্যে পৌঁছানোর পর নামতে যাওয়ার আগে ফুটপাত ঘেঁষে পার্কিং করছিলেন গাড়ির চালক। এমন সময় গাড়ির গা ঘেঁষে ক্রস করার সময় উল্টে পড়ে যান পাঠাওয়ের এক মোটরসাইকেল আরোহী ও তার চালক। এতে তারা কেউ আহত হননি। শুরুতে এ ঘটনায় কেউ না থাকলেও মুহূর্তেই ভিড় জমে যায়। তবে তারা ঘটনা থামানোর চেষ্টা না করে উল্টো গাড়ির চালককে মারধর করতে যায়। আর পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে আহত হন তানিয়া নূর। "ড্রাইভারকে যখন মারতে যাচ্ছিল আমার হাতে কাঁচের চুরি ছিল। আমি ফেরাতে গেলে হাতে আঘাত লেগে কেটে যায়। বেশ রক্ত পড়তে থাকে," তিনি বলেন। "এ অবস্থা দেখে সবাই আস্তে আস্তে সরে যায়।" মিস নূর বলছিলেন, ঘটনার বিস্তারিত কিছু না জেনে হঠাৎ করেই সহিংস ও অসহনশীল আচরণ করে সবাই। অনেকটা ঠিক আগুনে ঘি ঢালার মতো আচরণ করে জনতা। ভারতে তথাকথিত গোরক্ষকদের হাতে মুসলমান হত্যার বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন গিরিশ করনাডের মতো থিয়েটার ব্যক্তিত্বরা (ডানে)। আরো পড়ুন: গণপিটুনি রোধে ধীরে পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার? ঘূর���ণিঝড়ে সুন্দরবনে উপড়ে পড়েছে সাড়ে চার হাজার গাছ বাবরি মসজিদ রায়ে মুসলমানরা 'সুবিচার পায় নি' এ বিষয়ে সমাজবিজ্ঞানী ও মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন হতাশা আর হঠাৎ করে ব্যাপক প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কারণে অসহনশীলতা বাড়ছে। সমাজবিজ্ঞানী ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, "বাঙালিদের সহনশীলতার বিষয়টা প্রেক্ষিতের উপর নির্ভর করে"। তিনি বলেন, অনেক বিষয়ে ধৈর্য্যের পরিচয় দিলেও মাঝে মাঝে আইন হাতে তুলে নেয়ার মতো চরম অসহনশীলতার উদাহরণও দেখা যায়। এসব কারণেই গণপিটুনির মতো ঘটনা ঘটে। তবে অন্যায় দেখে চুপ থাকাটাও সহনশীলতা নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি। "অন্যের মতামত ও আচরণ কতটা যুক্তিসঙ্গত ভাবে গ্রহণ করা যায় সেটিই আসলে সহনশীলতা," বলেন ড. সায়মা হক বিদিশা। তিনি বলেন, "অন্যের মতামত, যুক্তি বোধ, জীবনযাত্রার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রাখাটাই সহনশীলতা। এদিক থেকে বলতে গেলে আমরা আসলে সহনশীলতা দেখাচ্ছি না"। এদিকে মনোবিদরা বলছেন, মানুষের অসহনশীল হওয়ার পেছনে পারিবারিক ও সামাজিক কারণ রয়েছে। আবার হতাশা, ধৈর্য্য শিক্ষার অভাব এবং সমাজে হঠাৎ করেই প্রযুক্তিগত উন্নয়নও একটি বড় কারণ। মনোবিজ্ঞানী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মেহজাবীন হক বলেন, "জিনগত ভাবে অনেকে অসহিষ্ণু হয়। আবার আমরা যে পরিবেশে বেড়ে উঠি সেখান থেকেও অনেক কিছু শিখি"। আবার দ্রুত ঘটে যাওয়া সামাজিক পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়াতে না পারাও সহনশীল না হওয়ার একটি বড় কারণ বলে উল্লেখ করেন ড. মেহজাবীন হক। "আমার অন্যকে দেখছি যে অল্প সময়ে মধ্যে কেউ বিশাল কিছু হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আমরা কিছু করতে পারছি না। যে কারণে আমরা সহনশীলতা দেখাতে পারছি না," বলেন তিনি। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে সচেতন না হলে মানুষের মধ্যে সহনশীলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। "উবার ড্রাইভারকে যদি মারাও শুরু করতো তাহলেও তাকে বাঁচানোর মতো আশেপাশে কেউ ছিল না। সবাই চাইছিল যে, আরেকটু ইনপুট দেই, গাড়িটা ভাঙি, এমন," বলছিলেন তানিয়া নূর। +text: করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় নির্ধারিত হাসপাতালগুলোয় পাঠানো এন-৯৫ মাস্কের মোড়কে সাধারণ মাস্ক দেয়া হয়েছিল দুদকের মুখপাত্র প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বিবিসি বাংলাকে এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, এন-৯৫ মাস্কের বদলে নকল মাস্ক দেয়ার অভিযোগ অনুসন্ধানের পর ওই কোম্পানির চেয়ারম্যা���, কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের একজন উপ-পরিচালকসহ ছয়জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় মঙ্গলবার মামলা করে দুদক। এরপর সেগুনবাগিচা থেকে জেএমআই গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরো পড়ুন: 'পেছনের রুই-কাতলাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ফল হবে না' স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি: 'সিন্ডিকেটের হাত কত লম্বা?' করোনা চিকিৎসা নিয়ে নানা অভিযোগের মুখে হাসপাতাল মনিটরিং কতটা প্রভাব ফেলবে বাংলাদেশে চিকিৎসা সরঞ্জামের জরুরি কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগ নকল বা মানহীন মাস্ক স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয় বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন গত এপ্রিল মাসে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় নির্ধারিত ঢাকার মুগদা জেনারেল হাসপাতালসহ কয়েকটি হাসপাতালে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে যেসব এন-৯৫ মাস্ক পাঠানো হয়, সেগুলো এন-৯৫ মোড়কে থাকলেও ভেতরে সাধারণ মাস্ক ছিল। এসব মাস্ক সরবরাহ করেছিল জেএমআই গ্রুপ। করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এসব মাস্ক সরবরাহের ঘটনা ব্যাপক সমালোচনা তৈরি করে। মাস্ক কেলেঙ্কারির ঘটনা তদন্ত এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চেয়ে হাইকোর্টে রিটও করা হয়। কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? বিশ্ব মহামারি শেষ হতে কতদিন লাগবে? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় করোনাভাইরাস নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন এন-৯৫ মাস্ক কেলেঙ্কারি মামলায় জেএমআই গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। +text: ইরানের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের নতুন টিকা হাতে এক স্বাস্থ্যকর্মী ইরান বলছে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে বাইরে থেকে টিকা আনতে না পারলেও নিজেদের উদ্ভাবিত টিকা দিয়েই তারা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়বে। ইরানের উদ্ভাবিত এই টিকার নাম রাখা হয়েছে কোভ-ইরানব্লেসিং। সেতাদ নামের একটি বিরাট রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, তাদের একটি কোম্পানি, শিফা ফার্মড, এই টিকা উদ্ভাবন করেছে। সফলভাবে এই টিকার পরীক্ষা শেষ হলে প্রতিমাসে তারা এক কোটি বিশ লাখ ডোজ টিকা উৎপাদন করতে পারবে। পরীক্ষামূলকভাবে যেসব স্বেচ্ছাসেবকের ওপর এই টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে, তারা হচ্ছেন এই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। একজন উর্ধ্বতন সরকারী কর্মকর্তার কন্যাকে প্রথম এই টিকা দেয়া হয়। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, এক উর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোখবারের কন্যাকে প্রথম এই টিকা দেয়া হয়েছে। এর উদ্দেশ্যে এই টিকাটির ব্যাপারে যেন মানুষের মধ্যে আস্থা তৈরি হয়। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচার করা এক বার্তায় ইরানর স্বাস্থ্যমন্ত্রী সায়ীদ নামাকি বলেছেন, "ইরানের জনগণের কাছে আমরা এই বার্তাই দিতে চাই যে, আমরা মানুষের শরীরে যে ইনজেকশন দেব, সেটিতে আমরা বিশ্বাস করি। যদি এখানে কোন জটিলতা হয়, আমরা সবাই এবং আমাদের সবার পরিবার সেটা স্ব-ইচ্ছায় মেনে নেব।" এদিকে উর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোখবার বলেছেন, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ইরান গণহারে এই টিকা তৈরি করতে পারবে। মধ্যপ্রাচ্যে ইরানেই করোনাভাইরাস মহামারির অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ মহামারি শুরু হওয়ার পর হতে ইরানে এ পর্যন্ত ৫৫ হাজার মানুষ করোনাভাইরাসে মারা গেছে। মধ্যপ্রাচ্যে ইরানেই সবচেয়ে বেশি মানুষ এই ভাইরাসে মারা গেছে। আক্রান্ত হয়েছে আরও প্রায় ১২ লাখ মানুষ। ইরানের নেতারা বার বার অভিযোগ করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা করোনাভাইরাসের টিকা আনতে পারছেন না। যদিও ঔষধপত্র এবং মানবিক ত্রাণ এই নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রাখা হবে বলে বলা হয়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসের টিকা সব দেশে বিতরণের জন্য যে কোভাক্স কর্মসূচী নিয়েছে, ইরান তাতে যোগ দিয়েছে। ইরানের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে, সরকারের এই উদ্যোগের পাশাপাশি তারা চীনের উদ্ভাবিত একটি টিকা আমদানির পরিকল্পনা করছে। আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: ইরানে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা ধামাচাপা দেয়ার তথ্য ফাঁস ইরানে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর আসল চিত্র কী? ইরান যেভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের তথ্য লুকিয়েছে ইরান এই প্রথম নিজেদের তৈরি এক করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে মানবদেহে পরীক্ষা শুরু করেছে। +text: টেকনাফ এবং উখিয়ায় ৩০টি শিবিরে ১১লাখের বেশি রোহিঙ্গা রয়েছে রবিবার ভোররাত ৩টার দিকে টেকনাফ হোয়াইক্যংয়ে চাকমারকুল ২১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এই সহিংসতার ঘট��া ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, নিহত ব্যক্তি ক্যাম্পের একজন বাসিন্দা। তার নাম নূর হাকিম, বয়স ২৭। তবে নিহতের শরীরের কোথাও গুলির কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। গোলাগুলির শব্দে আতঙ্কিত হয়ে দৌড়াদৌড়ির সময় তিনি পড়ে গিয়ে মারা যেতে পারেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আর ১০-১২ জনের মতো। তারা সবাই ছুটোছুটি করতে গিয়েই কমবেশি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। কারো শরীরের কোথাও গুলির চিহ্ন নেই। আহতদের বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্যা চিলড্রেনের অধীনে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, ক্যাম্পের ভেতরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটতে পারে। তবে এর পেছনে কারা জড়িত সেটা খতিয়ে দেখতে তদন্ত চলছে বলে জানায় পুলিশ। এপিবিএন ১৬ নম্বর ব্যাটেলিয়নের পক্ষ থেকে বলা হয়, "রাত তিনটার দিকে ক্যাম্পের নিরাপত্তায় যে পুলিশ সদস্যরা পাহারায় ছিলেন, তারা গোলাগুলির শব্দ শুনতে পান। মানুষের শোরগোলের শব্দও পাওয়া যাচ্ছিল। পরে ভোরের দিকে ক্যাম্পের ভেতর থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়।" "এছাড়া আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। কারও গায়ে কোন গুলির আঘাত নেই। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।" ক্যাম্পের ভেতরে রোহিঙ্গাদের মাঝে বিভক্তি বেড়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা দায়েরের কথা রয়েছে। সেখানে কাউকে অভিযুক্ত করা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এদিকে গোলাগুলির ঘটনায় আতঙ্কের মধ্যে আছেন ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গারা। গত ৮ই ডিসেম্বর রোহিঙ্গাদের দুটি গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলিতে অন্তত একজন নিহত এবং আরো একজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এর আগে, চৌঠা অক্টোবর ও ৬ই অক্টোবর দুটি পৃথক গোলাগুলির ঘটনায় ৬ জন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ প্রত্যেকবারই আধিপত্য বিস্তারকে সংঘর্ষের কারণ বলে উল্লেখ করেছিল। অক্টোবরে পর পর দুটি সংঘর্ষের ঘটনায় পরে র‍্যাব-১৫ এর একটি দল চাকমারকুল ক্যাম্প থেকে অস্ত্রসহ নয় জন রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার করে বলে খবর প্রকাশ হয়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজির টাকা ভাগাভাগি এবং আধিপত্য বিস্তার���ে কেন্দ্র করে সশস্ত্র সংঘর্ষে লিপ্ত হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই সশস্ত্র রোহিঙ্গা গ্রুপগুলোর অস্ত্রের উৎস অনুসন্ধান করতে গিয়ে টেকনাফের পাহাড়ে লুকানো অস্ত্রের কারখানা খুঁজে পায় র‍্যাব-১৫, সেই সূত্র ধরে অনুসন্ধান করে নয় জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে র‍্যাব। পুলিশ এবং র‍্যাব-এর ভাষ্য অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের গ্রুপগুলো ক্যাম্পের ভেতরে নানা অপরাধ করে গহীন পাহাড়ে লুকিয়ে যায়। তাদের মতে, রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপ সন্ধ্যার পর ক্যাম্পগুলোতে তৎপর হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অভিযান আরো জোরালো করা হবে বলে কর্মকর্তারা বলছেন। এদিকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে সংকটের মধ্যেই সম্প্রতি দুই দফায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়। আরও পড়তে পারেন: রোহিঙ্গা ক্যাম্প: রাতের আঁধারে নিয়ন্ত্রণ করে কারা রোহিঙ্গা শিবিরে সহিংসতার মূলে ইয়াবার টাকার ভাগ রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে গোলাগুলিতে ২ রোহিঙ্গা নিহত রোহিঙ্গা সংকট: 'কিছু বললে দা-বটি নিয়ে তেড়ে আসে' 'ভাসানচর মিয়ানমারের কাছে ভুল বার্তা দেবে' ভাসানচরে যেতে চাইছেন না রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের টেকনাফের একটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলাগুলির ঘটনায় একজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। +text: উত্তর সিরিয়াতে শিবিরে শিশুরা। সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর শক্ত ঘাটিগুলো পতনের পর তাদের যোদ্ধাদের অনেকের পরিবারের আশ্রয় মিলেছে শিবিরে। এই শিশুদের নিজের দেশে ফিরে যাওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক ও আইনি জটিলতা। বিবিসি রিয়ালিটি চেক তিনটি অনাথ শিশুর ঘটনা দেখার চেষ্টা করেছে যাদের বাবা-মা যুক্তরাজ্য থেকে সিরিয়াতে এসে ইসলামিক স্টেট গ্রুপে যোগ দেন। তারা যুদ্ধে নিহত হওয়ার পর সিরিয়াতে আটকে পরা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ এখন কী হবে? দায়িত্ব নিতে রাজি নয় অনেক দেশ উত্তর সিরিয়ায় শিবিরে থাকতেন আমিরা, হেবা ও হামজা। বিবিসির একটি রিপোর্টে তাদের দেখানো হয়েছিলো। জাতিসংঘ সম্প্রতি তাদের উদ্ধার করে রাকা শহরে নিয়ে গেছে। কিন্তু তাদের প্রত্যাবাসনে তৈরি হয়েছে জটিলতা। শিবিরে থাকতেন আমিরা, হেবা ও হামজা। সাধারণত বিদেশি নাগরিকেরা নিজ দেশের দূতাবাসের সহায়তা পাওয়ার অধিকার রাখে। উত্তর সিরিয়ার যে অংশে ইসলামিক স্টেট যোদ্ধাদের পরিবারের জন্য তৈরি শিবিরটি রয���েছে, সেই এলাকা এখন কুর্দি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। এই বাহিনীর প্রধান বহুদিন যাবত ইউরোপিয়ান দেশগুলোকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলছেন। আন্তর্জাতিক কমিটি অফ দ্যা রেডক্রস বা আইসিআরসি এই ব্যাপারে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। তারা বিভিন্ন ক্যাম্পে থাকা বিদেশিদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করে সরাসরি সেই দেশগুলোর দূতাবাস বা কনসুলারে যোগাযোগ করেছে। কিন্তু সেসব দূতাবাস থেকে তেমন কোন সাড়া মেলেনি। আর একটি সমস্যা হল বহু দেশ সিরিয়াতে তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছে। আইসিআরসির প্রধান পিটার মরার এ বছরের শুরুতে বলেছিলেন, "একটি খুব জটিল পরিস্থিতির দিকে আমরা তাকিয়ে আছি। জরুরী মানবিক সহায়তা দেয়া ছাড়া কেউই কোন প্রক্রিয়া বা অবকাঠামো তৈরি করে বিষয়টি সামাল দিতে আগ্রহী নয়।" উত্তর সিরিয়ার সবচেয়ে বড় শিবিরে ৭০ হাজার নারী ও শিশুকে আটকে রাখা হয়েছে। কোন কোন দেশ নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করে বলেছে, বিষয়টি নিয়ে কাজ করার জন্য এই মুহূর্তে তাদের কর্মকর্তাদের সিরিয়াতে পাঠানো অত্যন্ত বিপজ্জনক। কিন্তু যদিও সাংবাদিকরা সিরিয়ার সেই শিবিরে গেছেন। যুক্তরাজ্যের একটি পালার্মেন্ট সদস্যদের দলও সেখানে গেছেন। আরো পড়ুন: আইএস'এর বিদেশি যোদ্ধাদের ফিরিয়ে নিচ্ছে কারা? তুরস্ককে প্রতিহত করতে কুর্দিদের সাথে সিরিয়ার চুক্তি সিরিয়া তুরস্ক সীমান্তে চলছে তীব্র লড়াই সেই দলের একজন ছিলেন কনজারভেটিভ এমপি ক্রিসপিন ব্লান্ট। তিনি বলেছেন, সিরিয়া থেকে ব্রিটিশ নাগরিকদের যুক্তরাজ্যে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি "এমন একটি বোঝা যা আমাদের বহন করতে হবে" এবং শিশুদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। অস্ট্রেলিয়া অবশ্য সম্প্রতি বলেছে তারা শিশুদের উদ্ধার করার জন্য কোন ঝুঁকি নিয়ে তাদের কর্মকর্তাদের সেখানে পাঠাবে না। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিন্ডা রেনল্ডস বলেছেন, "জায়গাটা অত্যন্ত বিপজ্জনক। আমরা কোন অস্ট্রেলিয়ানকে সেখানে পাঠিয়ে তার জীবন বিপন্ন করবোনা।" ফিরে যাওয়ার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যদি কর্মকর্তারা শেষ পর্যন্ত যোগাযোগ করেনও, এই বিষয়ে তাদের পরবর্তী কাজ হবে এসব শিশুদের জাতীয়তা ও অভিভাবকত্ব নিশ্চিত করা। সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর শক্ত ঘাটিগুলো পতনের পর তাদের যোদ্ধাদের অনেকের পরিবারের আশ্রয় মিলেছে শিবিরে। কিন্তু সেটি খুবই জটিল একটি ব্যা���ার। কারণ শিশুটির মা-বাবার পরিচয় নির্ধারণ করার কোন কাগজপত্র হয়ত আর নেই। হতে পারে শিশুর মা-বাবার নাগরিকত্ব দুই দেশের। শিশুটি অনাথ হলে তার বৈধ অভিভাবকের পরিচয় নিশ্চিত করা মুশকিল হতে পারে। এই মুহূর্তে ডিএনএ পরীক্ষা করে অভিভাবকত্ব নিশ্চিত করার কোন ব্যবস্থাপনা তাদের আশপাশে নেই। যুক্তরাজ্য সরকার বলছে, এসব কারণে শিশুদের জাতীয়তা নির্ধারণ করার খুবই কঠিন। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দফতর বিবিসিকে বলেছে, "নাগরিকত্ব নিশ্চিত করতে আমরা সকল ধরনের প্রমাণ যাচাই করি। কিন্তু এক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটি সহজ নয়।" জুলাই মাসে কিংস কলেজের আন্তর্জাতিক কেন্দ্রের এক জরীপ বলছে, এখনো পর্যন্ত মাত্র চারটি শিশু যুক্তরাজ্যে ফিরেছে। তবে তারা বলেছে সংখ্যাটি নির্ভুল নাও হতে পারে। ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ পার্লামেন্টে বলেছেন, যুদ্ধের মধ্যে আটকে পড়া শিশুদের জন্য তার সহানুভূতি রয়েছে। কিন্তু তার সাথে আরও যোগ করে বলেন, "আমরা যদি এসব শিশুদের উদ্ধারের জন্য আরও কিছু করতে চাই , আমাদের ভাবতে হবে ভবিষ্যতে তা যুক্তরাজ্যের শিশুদের কী ধরনের ঝুঁকিতে ফেলবে।" বিবিসি রিয়ালিটি চেক শিবিরের শিশুদের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি দেখার চেষ্টা করেছে। সম্প্রতি আলোচনায় আসা শামিমা বেগমের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ সরকার তার নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করলেও তার সন্তান ব্রিটিশ নাগরিক হতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয়েছিলো। শামিমা বেগমের তিন সপ্তাহ বয়সের শিশুটি অবশ্য সিরিয়ায় শরণার্থী শিবিরেই মারা যায়। অন্য দেশের শিশুদের বেলায় কী ঘটছে? বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যেই বেশ কিছু শিশুকে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে। যেমন রাশিয়া প্রায় ১৪৫ থেকে ২০০ মতো শিশুকে বিমানে করে ফিরিয়ে এনেছে। বেশ কয়েকটি মধ্য এশিয়ার দেশও অনেক শিশুকে প্রত্যাবাসন করেছে। মে মাসে কাজাখস্থান সিরিয়ার শিবির থেকে ২৩০ জন কাজাখ নাগরিককে ফিরিয়ে এনেছে,যাদের বেশিরভাগই শিশু। সম্প্রতি ডিএনএ পরীক্ষার পর অস্ট্রিয়া দুটি শিশুকে ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে। তারা ফেরার পর কার হেফাজতে থাকবে সে নিয়ে আদালত একটি নির্দেশনা দিয়েছে। জার্মানি, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, সুইডেন এবং নরওয়ে একই ধরনের কাজ করেছে। এতে শিবিরের নিয়ন্ত্রণে থাকা কুর্দি বাহিনী, ইরাকি সরকার, রেডক্রস এবং অন্য কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্���ার মধ্যে নানা ধরনের সমন্বয় দরকার হয়েছে। অন্যান্য খবর: সুন্দরবনে বনদস্যুরা কি আবার ফিরে আসছে? দুর্নীতিবিরোধী অভিযান কি হঠাৎ করেই থেমে গেল? বাঁচার লড়াই করছে কবর থেকে উদ্ধার হওয়া শিশুটি বহু ইউরোপিয়ান নাগরিক তথাকথিত ইসলামিক স্টেট-এর হয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। যাদের অনেকের মৃত্যুর পর তাদের সন্তানেরা সিরিয়ায় আটকে আছে। +text: প্রত্যাবাসন আদৌ হবে কি-না বা হলে কবে হবে তা নিয়ে অবিশ্বাস আরো জোরালো হচ্ছে রোহিঙ্গাদের মধ্যে এরপর জাতিসংঘসহ নানা সংস্থার নানা উদ্যোগের পর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সরকারের আলোচনায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ২০১৮ সালের ২৩শে জানুয়ারি প্রত্যাবাসন শুরুর কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি। বরং রোহিঙ্গারা তখন আট দফা দাবি তুলেছিলো প্রত্যাবাসনের শর্ত হিসেবে। এর মধ্যে ছিলো - নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা, বাড়িঘর জমি ফেরত পাবার নিশ্চয়তার মতো বিষয়গুলো। এসব দাবি নিয়ে তখন বিক্ষোভ করেছিল আরাকান রোহিঙ্গা হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস সোসাইটি নামের একটি সংগঠন। এবার আবারও ২২শে অগাস্ট প্রত্যাবাসনের একটি সম্ভাব্য তারিখ মিয়ানমারের তরফ থেকে প্রকাশের পর বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন বিষয়ক কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম বিবিসিকে জানিয়েছেন, তারাও প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গাকে ২২শে অগাস্ট ফেরত পাঠানোর বিষয়ে কাজ করছেন। এর আগে বাংলাদেশ যে ২২ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারকে দিয়েছিলো তা থেকে সাড়ে তিন হাজারের মতো রোহিঙ্গার নাম প্রত্যাবাসনের জন্য নির্বাচন করে বাংলাদেশকে দিয়েছে মিয়ানমার। তালিকা পাওয়ার পর এসব রোহিঙ্গাদের মতামত যাচাই করার জন্য জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থাকে অনুরোধ করে বাংলাদেশ এবং সংস্থার কর্মীরা আজ মঙ্গলবার ক্যাম্পগুলোতে সে কাজ শুরু করেছে। পাশাপাশি প্রত্যাবাসনের জন্য নির্বাচিত যেখানে রাখা হবে ও যেখান থেকে বিদায় দেয়া হবে, সেসব স্থানগুলোতে অবকাঠামোগত প্রস্তুতি আগেই নেয়া শুরু হয়েছে বলে প্রত্যাবাসন বিষয়ক কমিশনার নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু রোহিঙ্গা নেতারা বলছেন প্রত্যাবাসনের জন্য তাদের সুনির্দিষ্ট দাবি আছে এবং সেগুলো বাস্তবায়ন না হলে প্রত্যাবাসনে কেউ রাজী হবেন না বলে জানিয়েছে। এক্ষেত্রে এবার পাঁচটি দাবির একটি তালিকা সম্বলিত লিফলেট গত দুদিন ধরে ক্যাম্পগুলোতে প্রচার করছে 'ভয়েস অফ রোহিঙ্গা' নামের একটি সংগঠন। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সমঝোতা কতটা সফল হবে 'মিয়ানমার সেনাবাহিনীর একটি অংশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আটকাতে চায়' এক বছরেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কেন শুরু হলো না? রোহিঙ্গা সংকট: 'কিছু বললে দা-বটি নিয়ে তেড়ে আসে' রোহিঙ্গাদের বোঝাতে মিয়ানমার সরকারের চেষ্টা কুতুপালং ক্যাম্প লিফলেটে যে পাঁচটি দাবির বাস্তবায়ন চায় রোহিঙ্গারা: ১. রোহিঙ্গারা আরাকানের স্থানীয় আদিবাসী এবং সে জন্য তাদের ন্যাটিভ স্ট্যাটাস বা স্থানীয় মর্যাদা সংসদে আইন করে পুনর্বহাল করতে হবে যার আন্তর্জাতিক গ্যারান্টি থাকতে হবে। ২. নাগরিকত্ব: প্রথমত, আরাকান রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের 'সিটিজেন কার্ড' দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরও সিটিজেনশিপ কার্ড দিয়ে প্রত্যাবাসন করে স্থানীয় নাগরিক মর্যাদা দিতে হবে। তৃতীয়ত, একই সাথে বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় থাকা রোহিঙ্গাদের সিটিজেনশিপ কার্ড দিয়ে স্থানীয় নাগরিক মর্যাদা দিতে হবে। ৩. প্রত্যাবাসন রোহিঙ্গাদের তাদের নিজস্ব গ্রামে ফিরিয়ে নিতে হবে এবং তাদের কাছ থেকে কেড়ে নেয়া জমিজমা যথাযথ ক্ষতিপূরণসহ ফেরত দিতে হবে। ৪. নিরাপত্তা আরাকানে রোহিঙ্গাদের জীবন ও সম্পদ রক্ষার জন্য রোহিঙ্গা পুলিশ বাহিনীর সাথে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। ৫. জবাবদিহিতা বার্মার স্থানীয় আদালতের পরিবর্তে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসির মতো কোনো ইন্টারন্যাশনাল ট্রাইব্যুনালে অপরাধীদের বিচার করতে হবে। উখিয়ায় বালুখালী ক্যাম্প কিন্তু এগুলো কি রোহিঙ্গাদের সবার দাবি? ভয়েস অফ রোহিঙ্গা নামের সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন শমসু আলম। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলছেন, তাদের মধ্যে সক্রিয় আরও অন্য সংগঠনের সাথে আলোচনা করেই তারা এসব দাবি চূড়ান্ত করেছেন। "আমরা নিজেদের মধ্যে সমন্বয় সভা করেছি। রোহিঙ্গাদের নিয়ে বসেছি। মতামত নিয়েছি। সবাই এসব দাবি আদায়ে একমত হতে রাজি হয়েছে।" মিস্টার আলম বলেন, এগুলো প্রত্যাবাসনের জন্য তাদের দাবি এবং ৭৫ ভাগ রোহিঙ্গাই এর সাথে একমত। তিনি জানান, সব ধরণের বিদেশী ডেলিগেশন কিংবা বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার কাছেও তারা বারবার এসব দাবি তুলে ধরেছেন যাতে করে 'কার্য���র প্রত্যাবাসন হয় ও রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে নিরাপদে জীবন যাপন করতে পারে'। মঙ্গলবার বেলা বারটার দিকে প্রত্যাবাসনের তালিকায় থাকা রোহিঙ্গাদের মতামত যাচাইয়ের কাজ করছিলেন জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার কর্মীরা। কুতুপালংয়ে ২৬ নম্বর ক্যাম্পে তাদের সাথে ছিলেন রোহিঙ্গাদের একজন নেতা বদরুল আলম। মিস্টার আলম বিবিসিকে বলছেন, "এখানে এগারো লাখ রোহিঙ্গাদের দেখভাল করতে আমরা ক্যাম্প ভিত্তিক প্রতিনিধি নিয়ে ৫৫ জনের একটি কমিটি করেছি যে কমিটিতে আমিও আছি। প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা, ঘর-বাড়ি ভিটা জমি ফেরত দেয়া ও নিরাপত্তাসহ ৫টি দাবি আমাদেরও।" তিনি বলেন, এসব দাবি বাস্তবায়ন ছাড়া প্রত্যাবাসনের কাজ সফল হবে না কারণ নাগরিকত্ব ও স্থানীয় হিসেবে মর্যাদা না পেলে রোহিঙ্গারা সেখানে ফিরলে সেই আগের মতোই নির্যাতন নিপীড়নের মুখে পড়তে হবে। বদরুল আলম বলেন, "জাতিসংঘ আগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক আর বার্মা সরকার তার অবস্থান পরিষ্কার করুক রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব বিষয়ে।" বাংলাদেশে এখন যে এগারো লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী আছে, তার বড় অংশই বাংলাদেশে প্রবেশ করা শুরু করেছিলো ২০১৭ সালের ২৫শে অগাস্ট। +text: দেশটি বিদেশি পর্যটক এবং বিনিয়োগকারীদের চোখে একটা তুলনামূলক নমনীয় ইমেজ তৈরি করতে চাইছে। নতুন একটি ভিসা প্রক্রিয়ায় এই ঘোষণা দেয়া হয়। ঘোষণা অনুযায়ী নারীরা এখন থেকে একলাও থাকতে পারবেন হোটেল রুমে। আগের নিয়ম অনুযায়ী হোটেলের রুম ভাড়া নেয়ার জন্য দম্পতিদের প্রমাণ করতে হত যে তারা বিবাহিত বা আত্মীয়। সৌদি সরকার পর্যটন ব্যবসাকে উজ্জীবিত করার জন্য এই প্রচেষ্টা নিয়েছে বলে বলা হচ্ছে। নতুন পরিবর্তন: আগে যুগলেরা বিবাহিত কিনা সেটার কাগজপত্র দেখাতে বলা হত। কিন্তু সেই নিয়ম এখন বিদেশিদের জন্য শিথিল করা হয়েছে। সৌদি আরবের ট্যুরিজম অ্যান্ড ন্যাশনাল হেরিটেজ কমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "সব সৌদি নাগরিকদের বলা হচ্ছে তাদের পরিবারের পরিচয় পত্র অথবা সম্পর্কের প্রমাণ পত্র নিয়ে যেতে হবে হোটেলে চেক-ইনের সময়"। "এই নিয়ম বিদেশিদের জন্য প্রযোজ্য হবে না। পরিচয়পত্র দেখিয়ে সব নারী, সৌদি নারীরাসহ একা হোটেল ভাড়া নিতে পারবে এবং থাকবে পারবে"। নতুন ভিসা নিয়মে বলা হয়েছে বিদেশি পর্যটকদের শরীর সম্পূর্ণ ঢেকে রাখতে হবে না। কিন্তু তারা আশা করছে পর্যটকরা মার্জিত পোশাক পরবে। অ্যালকোহল নিষিদ্ধই থাকবে। পরিবর্তনের কারণ: পৃথিবীর বুকে দীর্ঘ সময় ধরে পর্যটকদের কাছে সৌদি আরব নানা বিধিনিষেধে পূর্ণ একটি দেশ। এখন দেশটি বিদেশি পর্যটক এবং বিনিয়োগকারীদের চোখে একটা তুলনামূলক নমনীয় ইমেজ তৈরি করতে চাইছে। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান রক্ষণশীল এই দেশে সম্প্রতি বেশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরিবর্তন এনেছেন। সৌদি আরবে মেয়েদের গাড়ি চালানো নিষেধ ছিল তারমধ্যে নারীদের গাড়ী চালাতে দেয়া এবং পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া বিদেশে ভ্রমণের অনুমতির বিষয় রয়েছে। কিন্তু সাংবাদিক জামাল খাসোগজির বহুল বিতর্কিত হত্যাকাণ্ডের ফলে এসব পরিবর্তন ধামাচাপা পড়ে গেছে। দ্যা ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকার সিনিয়র ট্রাভেল এডিটর বলেছেন, ভিসা প্রক্রিয়া শিথিল করার ফলে সৌদি আরবে পর্যটক বা মানুষের ট্রাভেল করার সংখ্যা বাড়তে পারে। "সৌদি আরবের ভিসা পাওয়ার জন্য কূটনৈতিক বিষয়াদি বিশাল আকারে সহজ করার ফলে তাৎক্ষণিক পর্যটকের সংখ্যা বাড়িয়ে দিতে পারে, আমার মনে হয় যাদের আরব বিশ্ব এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে আগ্রহ আছে তারা আগ্রহ দেখাবে প্রাথমিকভাবে", তিনি বিবিসি কে বলেন। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: যুবলীগ নেতা সম্রাট অবশেষে গ্রেপ্তার 'মানবিক কারণে' ভারতকে ফেনীর পানি দিল বাংলাদেশ পেঁয়াজ যেভাবে ভারতের রাজনীতিবিদদের কাঁদাচ্ছে সৌদি আরবে এখন থেকে অবিবাহিত যুগলেরাও একসঙ্গে থাকার জন্য হোটেলের রুম ভাড়া করতে পারবেন। +text: আত্মসমর্পণের দলিলে সই করছেন পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা আমির আবদুল্লা খান নিয়াজি ভারতের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সশস্ত্র বাহিনী, ক্যাবিনেট মন্ত্রী বা বিরোধী রাজনীতিকরা অনেকেই সেই 'বিজয় দিবস'কে আজ টুইটারে স্মরণ করেছেন - বাদ যাননি বহু তারকাও। কিন্তু তাদের বেশির ভাগের টুইটে-ই ১৬ ডিসেম্বরের এই দিনটিকে 'ভারতীয় সেনাবাহিনীর অসাধারণ সাফল্য' বলে বর্ণনা করা হয়েছে - বিজয় দিবসের সঙ্গে যে বাংলাদেশের কোনও সম্পর্ক আছে - তা বোঝাই যাবে না সেগুলো পড়লে । কেউ কেউ অবশ্য আবার বাংলাদেশের এই প্রতিষ্ঠালগ্নটিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন। বিজয় দিবসে নরেন্দ্র মোদীর টুইট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সকালেই টুইট করেছেন, "১৯৭১-য়ে যে নির্ভীক সেনারা লড়াই করেছিলেন, আজ বিজয় দিবসে তাদের অদম্য সাহসকে স্মরণ করি।" "তাদের বীরত্ব আর দেশপ্রেমই আমাদের দেশকে সুরক্ষিত রাখতে পেরেছে। এই মহান অত্মত্যাগ প্রত্যেক ভারতীয়কে চিরকাল অনুপ্রাণিত করবে।" প্রধানমন্ত্রী মোদী সচরাচর তার টুইটে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানানোর কোনও সুযোগ হাতছাড়া করেন না - কিন্তু তার আজকের মন্তব্যে বাংলাদেশ শব্দটির উল্লেখ পর্যন্ত নেই। প্রধানমন্ত্রীর টুইটের জবাবেই মন্তব্য করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপির হিন্দুত্বের 'পোস্টার বয়' যোগী আদিত্যনাথ - এবং তিনিও বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টানা থেকে বিরত থেকেছেন। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের টুইট বরং ঢাকাতে ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১-য়ে পাকিস্তানি সেনার আত্মসমর্পণের একটি রঙিন ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, "ভারতের পরাক্রমের নজির হল এই ছবিটি - ১৯৭১র বীর যোদ্ধাদের শত শত প্রণাম!" প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে যে পোস্ট করা হয়েছে তাতে আবার বিজয় দিবসের সাফল্যের পুরো কৃতিত্বই দেওয়া হয়েছে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে - সেখানেও মুক্তিবাহিনীর অবদান অনুচ্চারিত। সেখানে লেখা হয়েছে, "ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর শক্তি, সাহস আর সঙ্কল্পই মাত্র চোদ্দ দিনের মধ্যে পাকিস্তানি বাহিনীকে অস্ত্র সংবরণে বাধ্য করেছিল - যা আধুনিক ইতিহাসে বৃহত্তম সামরিক আত্মসমর্পণগুলির মধ্যে একটি।" বিজয় দিবসে এই অর্জনকে গর্বের সঙ্গে স্মরণ করেছে ওই টুইট - এ কথাও মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে ভারত ৯০ হাজারেরও বেশি পাকিস্তানি সেনাকে যুদ্ধবন্দী করেছিল। ভারতীয় বিমান বাহিনীর বিজয় দিবসের পোস্ট ভারতীয় বিমান বাহিনীর টুইটার অ্যাকাউন্টেও বিজয় দিবসকে পুরোপুরি 'ভারতের বিজয়' বলেই বর্ণনা করা হয়েছে। যুদ্ধের বীর সেনানীদের শ্রদ্ধা জানিয়ে ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্স একটি ছবিও পোস্ট করেছে - যার ক্যাপশনে লেখা হয়েছে "১৯৭১-র যুদ্ধে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের সামরিক বিজয়কে উদযাপন করতেই বিজয় দিবস পালন করা হয়ে থাকে।" তবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বিজেপি মন্ত্রীদের মধ্যে রাজ্যবর্ধন রাঠোরের টুইটে বাংলাদেশের সামান্য উল্লেখ এসেছে। সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা ও অলিম্পিকে পদকজয়ী শ্যুটারও অবশ্য বিজয় দিবসের কৃতিত্ব দিয়েছেন শুধু 'ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর অতুলনীয় পরাক্রম'কে। কংগ্রেস মুখপাত্রের টুইট কিন্তু সেই সঙ্গেই তিনি লিখেছেন, "১৯৭১ সালের আজকের দিনেই আমাদের সেনাবাহিনী পাকিস্তানকে পরাজিত করেছিল এবং জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশের।" ভারতে বিরোধী দল কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালার টুইটেও অবশ্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সশ্রদ্ধ উল্লেখ আছে। তিনি বিজয় দিবসকে "১৯৭১-র বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক" বলেই বর্ণনা করেছেন। তার দলের প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধী অবশ্য এদিন বিকেল পর্যন্ত অন্তত বিজয় দিবস নিয়ে কোনও টুইট-ই করেননি। বিজয় দিবসে বীরেন্দার সেহওয়াগের টুইট টুইটারে তার নানা সরস ও তির্যক মন্তব্যের জন্য ভারতে সোশ্যাল মিডিয়া জগতে সম্প্রতি তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন সাবেক ক্রিকেট তারকা বীরেন্দার সেহওয়াগ - বিজয় দিবসে টুইট করেছেন তিনিও। কিন্তু তার পোস্টেও বাংলাদেশ বা মুক্তিযুদ্ধের কোনও উল্লেখ নেই। "৪৭ বছর আগে, ১৯৭১ সালে আজকের দিনটি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন ছিল" বলেই মন্তব্য শেষ করেছেন বীরেন্দর সেহওয়াগ। ঠিক সাতচল্লিশ বছর আগে আজকের দিনে ঢাকায় ভারতীয় বাহিনীর কাছে পাকিস্তানি সেনার আত্মসমর্পণের মধ্যে দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশের। +text: সারা বিশ্বে কোটি কোটি মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ফেসবুক যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ কোটিরও বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটারদের প্রভাবিত করার জন্যে ব্যবহার করা হয়েছিলো- এই অভিযোগ উঠার পর এধরনের আহবান চোখে পড়ছে। অভিযোগটি উঠেছে লন্ডন-ভিত্তিক ব্রিটিশ একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার বিরুদ্ধে। অভিযোগ হলো এই প্রতিষ্ঠানটি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে ব্যবহার করা হয়েছিলো। এই অভিযোগটি খবর হিসেবে প্রকাশিত হওয়ার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যারা ব্যবহার করেন তারা হ্যাশট্যাগ দিয়ে একটি প্রচারণা চালাতে শুরু করেন। যেমন #ডিলিটফেসবুক কিম্বা #বয়কটফেসবুক। এই আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ব্রায়ান একটনও। আরো পড়ুন: বিদেশীদের যৌন কাজের টার্গেট হচ্ছে রোহিঙ্গা মেয়েরা স্টিভেন হকিং সমাহিত হবেন নিউটন ও ডারউইনের পাশে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের পদ���্যাগে সু চি'র কী লাভ? ফেসবুক ১৯ বিলিয়ন ডলারে হোয়াটসঅ্যাপ কিনে নেওয়ার তিন বছর পর তিনি ওই প্রতিষ্ঠান ছেড়ে চলে যান। টুইটার ব্যবহারকারীদের একজন এই প্রচারণা চালাতে গিয়ে বিবিসির গত বছরের একটি স্টোরিও টুইট করেছেন। ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার ব্যাপারে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার সাথে জড়িত ছিলেন এরকম গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তির সাক্ষাৎকার থেকে তিনি চারটি উদ্ধৃতি তুলে ধরেছেন ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মি. ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার ব্যাপারে ফেসবুকের ভূমিকা সংক্রান্ত অভিযোগ সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার জন্যে। যেমন তিনি বলেছিলেন, "ফেসবুক আমাদের একটি পার্টনার", এবং "ফেসবুক ছাড়া আমরা জিততে পারতাম না।" অভিযোগ উঠেছে যে ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটারদের উপর প্রভাব বিস্তারের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে কেউ কেউ বলছেন, এই ঘটনার পর থেকে অনেকেই হয়তো ফেসবুক ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা চিন্তা করতে পারেন। যারা হ্যাশট্যাগ দিয়ে "ডিলিট ফেসবুক" প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা প্রচুর লাইকও পাচ্ছেন। আবার অনেক বলছেন, একটি সামাজিক মাধ্যমে আরেকটি সামাজিক মাধ্যমের এরকম নিন্দা করার বিষয়টিও গ্রহণযোগ্য নয়। একজন কৌতুক করে মন্তব্য করেছেন, "ফেসবুক ডিলিট করতে অনেকে বলছেন যেটা টুইটারে হ্যাশট্যাগ দিয়ে চলছে- আরেকটি সোশাল মিডিয়া তার ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে।" আরেকজন বলেছেন, "যেহেতু ফেসবুক ইন্সটাগ্রামেরও মালিক, একটি ডিলিট করলে আপনাকে তো অন্যটিও ডিলিট করতে হবে।" তবে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত যেভাবে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে সেরকম কোন অভিযোগ টুইটার কিংবা ইনস্টাগ্রামের নামে এখনও আসেনি। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা আরো বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। তবে প্রাইভেসি ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠানের একজন মুখপাত্র সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এসব তথ্যের গোপনীয়তার ব্যাপারে যে উদ্বেগ সেটা শুধু ফেসবুকের মধ্যেই সীমিত নেই। কারণ "আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সবসময়ই ব্যবহার করা হচ্ছে।" আরেকজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ফেসবুক ডিলিট করে দিলেই সমস্যার সমাধান হবে না। কারণ অনলাইনে এসব তথ্যকে এখনও পর্যন্ত খুব একটা সুরক্ষা দেওয়া হয়নি। আরো পড়ুন: সন্ত্রাস-বিরো���ী নাগরিক হোন: ব্রিটিশ পুলিশ 'একবারই কমেন্ট করেছিলাম একটি বাংলা পত্রিকার নিউজে. তারপরে গালাগালির বন্যা!' সামাজিক মাধ্যমে প্রেম-বিয়ে-সম্পর্ক; মেয়েদের কতটা স্বাধীনতা দিয়েছে? যেভাবে ছড়ায় সাংবাদিক ও পুলিশের বচসার ভিডিও ফেসবুকের দশ বছর: জীবনে প্রভাব "আমরা সবাই মাইস্পেস থেকে সরে এসেছি। ফেসবুক থেকেও আমরা সরে যেতে পারি।" - এরকম বার্তা চোখে পড়ছে আরেক সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটারে। +text: সহিংসতা ও নির্যাতনের ভয়াল স্মৃতি নিয়ে সদ্য পালিয়ে আসা অনেকে রাখাইনে ফিরে যাওয়ার প্রশ্নে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। নিজ দেশে সহিংসতা ও নির্যাতনের ভয়াল স্মৃতি নিয়ে সদ্য পালিয়ে আসা অনেকে রাখাইনে ফিরে যাওয়ার প্রশ্নে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আট সন্তান নিয়ে কুতুপালং অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে খোদেজা বেগম। তার স্বামীকে রাখাইনে হত্যা করা হয়েছে বলে তার অভিযোগ। দেশে ফেরত যেতে চান কিনা এ প্রশ্নে খোদেজা বিবিসিকে বলেন, আমার স্বামীকে ওরা গুলি করে মেরেছে। ওখানে আর ফেরত যেতে মন চায় না।" জীবন বাঁচাতে জমি-জমা, বসত-ভিটা, সহায় সম্পত্তি সব ফেলে চলে এসেছেন খোদেজা। বর্তমান শরণার্থী জীবনের কষ্টের কথা ভেবে শর্তসাপেক্ষে আবার ফিরে যাবার ইচ্ছাও জানালেন, "যদি শান্তি ফিরে আসে। যেখানে আমরা ছিলাম সেখানে যদি সব কিছু ফিরে পাই, তাহলে যাব।" খোদেজা বেগম কিছুটা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে থাকলেও লায়লা বেগমের সাফ কথা তিনি আর ফিরতে চান না মিয়ানমারে। বিবিসির কাছে তিনি বলছিলেন- "আমাদের স্বজনদের যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, মা বোনদের অত্যাচার ও জুলুম (ধর্ষণ) করা হয়েছে কিভাবে যাবো? মুসলমান দেশে আমরা এসেছি। আমাদের এখানে বোমা মেরে উড়িয়ে দাও। আমাদের কোনো আপত্তি নাই।" সরকারীভাবে তাদের ফেরত নেয়া হবে এতে উদ্বেগ কেন জানতে চাইলে, লায়লা বেগম বলেন, "ফেরত নিয়ে যাবে! শান্তির কথা বলবে। কিন্তু দুই চারদিন বাদে আবার পোড়াবে, আবার কাটা শুরু করবে, গুলি মারবে। আর যেতে চাই না"। পালিয়ে আসা বেশিরভাগ রোহিঙ্গা এখনও শারীরিকভাবে দুর্বল, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। আরো পড়ুন: পালিয়ে আসা বেশিরভাগ রোহিঙ্গা এখনও শারীরিকভাবে দুর্বল। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। রোহিঙ্গা নারী পুরুষদের সঙ্গে আলাপ করে বোঝা গেল রাখাইনে সহিংসতার কথা অনেকেই ভুলতে পারছে না। এদের অনেকেই স্বজন হারিয়েছেন। চোখের সামনে পুড়তে দেখেছেন ঘরবাড়ি। রোহিঙ্গা শিবিরে ত্রাণবাহী ট্রাকের কাছে ছয় মাসের ছেলেকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন আমির হোসেন। তিনি বলছিলেন, রাখাইনে ১৫ কানি জমির মালিক তিনি। গরু ছিল দশটা, গোলায় ধান-চাল, ঘরবাড়ি সবছেড়ে চলে এসেছে। কোলের ছেলেকে দেখিয়ে আমির হোসেন বলছিলেন, ওই বয়সী বাচ্চাদের আগুনে ছুঁড়ে হত্যা করা হয়েছে রাখাইনে। ত্রাণ শিবিরে এত কষ্টের মধ্যে থাকার পরও যখন দেশে ফিরে যাবার প্রসঙ্গ আসে তখন আর উৎসাহ দেখান না আমির হোসেন। বলেন, "দুই চার বছর পর পরই আমাদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন হয়। এ পরিস্থিতিতে সেখানে বাস করার কথা চিন্তা করা যায় না। আমাদের ওখানে (রাখাইন) শান্তিতে থাকতে দেবে না।" আবার রোহিঙ্গাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা দ্রুত নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরতে চান। ১০৫ বছর বয়সী পিতাকে কাঁধে করে পাহাড় জঙ্গল পেরিয়ে ১২ দিনে বাংলাদেশে এসেছে রমজান আলী ও তার পরিবার। তার কথা অনেক কিছু ফেলে এদেশে আশ্রয় নিয়েছে সে। রাখাইনে নতুন ঘর বানিয়েছিল তার পরবার। ১২ কানি জমি ছিল। গবাদী পশু আর অনেক ধান-চাল ছিল। ছিল না কোনো অভাব। তার লাখ টাকার নতুন ঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তারপরও নিজ দেশে ফেরার প্রত্যাশা আছে রমজান আলীর, "অত্যাচার জুলুম বন্ধ হলে, যেখানে আমরা ছিলাম সেখানে যদি থাকার ব্যবস্থা করে, বার্মা সরকার যদি শান্তি দেয়, তাহলে আমরা ফেরত যাব"। এদিকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার বিষয়ে সোমবার বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকারি পর্যায়ে আলোচনার পর বুধবার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের বক্তব্য তুলে ধরেছে। অ্যামনেস্টির বক্তব্যে ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাউকে মিয়ানমারে ফেরত না পাঠানোর বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ফেরত পাঠানোর প্রস্তাবকে ইতিবাচক উল্লেখ করেই সংস্থাটি বলছে যেখানে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সেনাবাহিনীর সহযোগে জাতিগত নিধন প্রক্রিয়া জারি রয়েছে সেখানে কাউকে জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো উচিৎ হবে না। উল্লেখ্য, মিয়ানমারে ২৫শে আগস্টে সহিংসতার পর সামরিক অভিযান শুরু হলে এ পর্যন্ত ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বিবিসি বাংলার আরো খবর: শেষ পর্যন্ত অজগরটি খেয়েই ফেললো গ্রামবাসী অভিনব কায়দায় অ্যামাজনকে বোকা বানালো স্বামী-স্ত্রী প্রধান বিচারপতির ছুটি নিয়ে কেন এতো সন্দেহ-বিতর্ক? বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমার সরকারের ���্রস্তাব ও দুই দেশের আলোচনার প্রেক্ষাপটে নিজ দেশে ফেরার প্রশ্নে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা। +text: কৃষকের বাজার থেকে এসব আলু কিনেছেন শাহানা হুদা বিক্রেতার দাবি এটি 'জিন আলু', যদিও এ নামে কোনো আলু কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট বা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তালিকায় নেই। পাবনার ঈশ্বরদীর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ কামাল উদ্দিন আহাম্মেদ বলছেন, বাজারে এটি দেখা গেলেও সরকারিভাবে বা কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট থেকে এটি করা হয়নি। "আলুর জাত আনার ক্ষেত্রে সরকারি অনুমোদনের বিষয়টি শিথিল করা হয়েছে তিন বছরের জন্য। এ সুযোগে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নানা জাতের আলু আনছে ও চাষ করছে। কালো রংয়ের আলু তেমনি একটি উদ্যোগ হতে পারে"। তবে ক্রেতাদের একজন শাহানা হুদা গত মাসেই কৃষকের বাজারে গিয়েছিলেন এবং ব্যতিক্রমী ধরণের আলুটি দেখে নিজে কিনেছেন। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, "আলুর ওপরেও যেমন কালো রংয়ের তেমনি ভেতরেও কালো রংয়ের। বিক্রেতা বলেছেন এটির নাম জিন আলু"। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: বিদেশে জমি কিনে চাষাবাদ করতে চায় বাংলাদেশ, কতটা সম্ভব? পেঁয়াজসহ ১৪ পণ্যের উৎপাদন খরচ চূড়ান্ত, কী লাভ কৃষক-ভোক্তার? অ্যাকোয়াপনিকস: মাছ ও সবজি চাষের নতুন যে পদ্ধতি বাংলাদেশেও চলছে যেসব দেশি ফলের চিত্র পাল্টে দিলো বিদেশি প্রজাতি কালো আলু কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের কন্দাল ফসল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বিমল চন্দ্র কুণ্ডুর নেতৃত্বাধীন একটি দল নতুন জাত উদ্ভাবনের কাজ করেন। মিস্টার কুণ্ডু বলছেন, 'জিন আলু বলে কোনো আলু নেই এবং কালো আলু বলা হলেও এর ভেতর ও বাইরের প্রকৃত রং আসলে গাঢ় খয়েরী। "আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া থেকে জার্মপ্লাজম সংগ্রহ করে এনে বাংলাদেশে এখন এ ধরণের আলুর ট্রায়াল করছি। কয়েকমাসের মধ্যে এ ট্রায়াল শেষ হলে বোঝা যাবে এখানে ফলন কেমন হয় বা সম্ভাবনা কেমন," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি। তিনি বলেন আলুটিতে অ্যান্থসায়ানিনের পরিমাণ বেশি থাকায় এর রং খয়েরী বা কালচে দেখায়। "তবে এ উপাদান বেশি থাকায় আলুটিতে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের পরিমাণ বেশি যা শরীরকে সতেজ রাখতে সহায়তা করে। সাধারণত হালকা সিদ্ধ করে এ আলু সালাদ হিসেবে খাওয়া যায়"। ডঃ কুণ্ডু বলছেন একই ধরণের মিষ্টি আলুরও একটি জ���তের ট্রায়াল চলছে এখন কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটে। কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের একজন ড. মোঃ জুলফিকার হায়দার বলছেন, সরকার বিদেশি জাতের আলু এনে নতুন জাত উদ্ভাবনের জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে তিন বছরের একটি সুযোগ দিয়েছে এবং এজন্য তাদের অনুমোদনের দরকার হয় না। আর এ কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান নিজ উদ্যোগে কাজ করছে যা কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের আওতায় নেই ফলে এখন কারা কালো আলুর চাষ করছেন সে সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়না বলে জানান তিনি। তিনি বলেন বাংলাদেশে খাওয়ার জন্য বারি আলু ২৫ (এসটেরিক্স) জাতটি সবচেয়ে বেশি সমাদৃত আর দেশে ব্যাপকভাবে প্রচলিত প্যাকেটজাত খাবার চিপস তৈরিতে ব্যবহার হয় কারেজ (বারি আলু ২৯) ব্যবহার করে কোম্পানিগুলো। কালো আলু বাংলাদেশে আলু উৎপাদন বাংলাদেশে উন্নত জাতের আলু চাষাবাদ শুরু হয় ষাটের দশকে। মূলত অর্থকরী ফসলের মধ্যে ধান ও গমের পরেই আলুর অবস্থান। এখন দেশে উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ৯৫ লাখ মেট্রিক টন, যদিও দেশে আলুর চাহিদা এর অর্ধেক। তবে বাংলাদেশ থেকে রাশিয়া, মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা, সিঙ্গাপুরসহ নানা দেশে আলু রপ্তানি করা হয়। যদিও কৃষি তথ্য সার্ভিস বলছে বাংলাদেশে উৎপাদিত সব ধরণের আলু রপ্তানি করা যায় না। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও শ্রীলংকায় গ্রানুলা জাতের আলুর চাহিদা বেশি আবার মালয়েশিয়ায় ডায়মন্ট ও কার্ডিনাল জাতের আলু রপ্তানি হচ্ছে। কন্দাল ফসল গবেষণা কেন্দ্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল বিদেশী আলু জাত আছে প্রায় আশিটি। তবে বাংলাদেশে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে আলু চাষের প্রবণতা কম বলে এখানে হেক্টর প্রতি উৎপাদন ১১ টনের মতো, যা অনায়াসেই ২০-২৫ টনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন কৃষিবিদরা। ডঃ বিমল কুমার কুণ্ডু বলছেন এ কারণে উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবনে তারা কাজ করে যাচ্ছেন যার সুফলও পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনে প্রতি শুক্র ও শনিবার যে কৃষকের বাজার বসে সেখানেই একজন কৃষক বিক্রি করেন কালো রংয়ের আলু। +text: লকডাউনের পর লন্ডনের যাত্রীশূন্য ওয়াটারলু স্টেশন। স্বাভাবিক সময়ে এখানে হাজার হাজার যাত্রীর ভিড় থাকে। নেদারল্যান্ডস এবং বেলজিয়াম এরই মধ্যে ব্রিটেনের সঙ্গে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। লন্ডন হতে বেলজিয়াম পর্য���্ত ট্রেন সার্ভিসও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, তার সরকার ফ্লাইট নিষিদ্ধ করার কথা ভাবছে। ফ্রান্স এবং জার্মানিও একই ব্যবস্থা নেয়ার কথা বিবেচনা করছে। এই নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাস লন্ডন এবং দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডে দ্রুত ছড়াচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। এ নিয়ে মারাত্মক উদ্বেগের পটভূমিতে গতকাল হঠাৎ করেই লন্ডন এবং দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের বিরাট অংশ জুড়ে কঠোর লকডাউন জারি করা হয়। নতুন ধরনের এই করোনাভাইরাস সম্পর্কে কী জানা যাচ্ছে? ব্রিটিশ গবেষকরা লন্ডন এবং আশে-পাশের অঞ্চলে যে ভাইরাসের বিস্তার দেখছেন, সেটিকে তারা নিউ ভ্যারিয়েন্ট, অর্থাৎ নতুন বৈশিষ্ট্যের ভাইরাস বলে বর্ণনা করছেন। এটি যে আগেরটির চেয়ে অনেক বেশি প্রাণঘাতী বা মারাত্মক, সেরকম প্রমাণ তারা এখনো পাননি। আর এটিকে মোকাবেলার ক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের নতুন টিকা যে ভিন্ন ফল দিচ্ছে, সেটাও তারা বলছেন না। অত্যাবশকীয় সামগ্রীর দোকান ছাড়া আর সব দোকানপাট বন্ধ রাখতে হবে। করোনাভাইরাসের মহামারি শুরুর পর থেকেই বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, অন্য যে কোন ভাইরাসের মতো করোনাভাইরাসের এই নতুন ভাইরাসটিও মিউটেশনের মাধ্যমে পরিবর্তিত হতে পারে। তার বৈশিষ্ট্য এবং আচরণে পরিবর্তন ঘটতে পারে। লন্ডন এবং আশে-পাশের অঞ্চলের ভাইরাসটি নতুন করোনাভাইরাসের এরকম এক পরিবর্তিত রূপ বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। যেটি গবেষকদের অবাক করেছে, তা হলো, এই ভাইরাসটি অনেক বেশি সহজে এবং দ্রুত ছড়াচ্ছে। আগেরটির তুলনায় এই নতুন করোনাভাইরাস ৭০ শতাংশ বেশি হারে ছড়াচ্ছে। ব্রিটিশ সরকারকে যে শুক্রবার আচমকা আবারও কঠোর লকডাউন জারি করতে হলো, তার পেছনে এটাই কারণ। এটি সরকারের মধ্যে যথেষ্ট উদ্বেগ তৈরি করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা বলছে, এই নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাস এখন নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক এবং অস্ট্রেলিয়াতেও নাকি পাওয়া গেছে। এটা নিয়ে তারা তাই ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আবার কঠোর লকডাউন ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক স্বীকার করেছেন করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল বলে এই কঠোর বিধিনিষেধ জারী করতে হয়েছে। তিনি এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন যে এবারের কঠোর লকডাউন দু‌ইমাস ���রে চলতে পারে। ক্রিসমাসের আগের সপ্তাহে সরকারের এই পদক্ষেপ থেকে বোঝা যায়, সরকার পরিস্থিতিকে খুবই উদ্বেগজনক বলে মনে করছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন মাত্র কয়েকদিন আগে বলেছিলেন, ক্রিসমাসের সময় যদি বিধিনিষেধ শিথিল করা না হয়, সেটা হবে অমানবিক এবং তখন তিনি বিধিনিষেধ শিথিল করার কথাই বলেছিলেন। কিন্তু তিনদিনের মাথায়, তাকে সেই পরিকল্পনা শুধু বাদই দিতে হলো না, উল্টো আর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করতে হলো। এর কারণ একটাই, এখানে সংক্রমণ আবারও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সংক্রমণের হার বা আর নম্বর, এটি আবারও একের উপরে চলে গেছে। অর্থাৎ যত মানুষ প্রতিদিন সংক্রমণের শিকার হচ্ছেন, তারা আরও বেশি মানুষের কাছে সেটি ছড়িয়ে দিচ্ছেন। আগের করোনাভাইরাসটির তুলনায় নতুন বৈশিষ্ট্যের ভাইরাসটি অনেক দ্রুত ছড়াচ্ছে। ব্রিটেনে গত এক সপ্তাহে করোনাভাইরাসে মারা গেছে তিন হাজারের বেশি, এক সপ্তাহে নতুন সংক্রমণের শিকার হয়েছে ১ লাখ ৭৩ হাজার। সংক্রমণ ছড়াচ্ছে খুবই দ্রুত, বিশেষ করে লন্ডন এবং দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডে । আর একারণেই এই অঞ্চলটিতে টিয়ার-ফোর, অর্থাৎ, সর্বোচ্চ মাত্রার লকডাউন জারি করা হয়েছে। এই লকডাউনের মানে হচ্ছে, লোকজনকে তাদের ঘরে থাকতে হবে, কেবল যাদের কাজ বা শিক্ষার কারণে বাইরে যেতে হবে তারা ছাড়া। ঘরে বাইরের কারও আসা নিষেধ। আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন করোনাভাইরাসের টিকা নিতে হলে জন্মসনদ দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়াল কেবল অত্যাবশকীয় জিনিসপত্রের দোকান ছাড়া আর সব বন্ধ রাখতে হবে। ঘরের বাইরে খোলা জায়গায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কেবল একজন লোকের সঙ্গেই দেখা করা যাবে। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা এলাকা ছেড়ে কেউ বাইরে যেতে পারবে না, বাইরে থেকে কেউ আসতেও পারবে না। ফলে এর কারণে ট্রেন, বিমান চলাচল সহ সব ধরণের যাতায়তেই বিঘ্ন ঘটবে। এ বছরের শুরুতে যে ধরণের কঠোর লকডাউন ইউরোপে দেখা গেছে, লন্ডন এবং আশেপাশের এলাকা এখন আবার কার্যত সেরকম লকডাউনের আওতায় আসলো। ব্রিটেনে ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের এক করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর অনেক দেশ এখন ব্রিটেনের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বা নিষেধাজ্ঞা জারির কথা বিবেচনা করছে। +text: ডেমোক্রেটিক পার্টি ও রিপাবলিকান উভয় দলের সদস���যরা একাট্টা হয়ে বারাক ওবামার অবস্থানের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। এর ফলে ২০০১ নাইন ইলেভেন সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো চাইলে সৌদি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে। এক্ষেত্রে বারাক ওবামার অবস্থানের বিপক্ষে স্বয়ং তার দল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও রিপাবলিকান, উভয় দলের সদস্যরা একাট্টা হয়ে ভোট দিয়েছেন। কদিন আগেই এ সংক্রান্ত বিলটিতে ভেটো দিয়েছিলেন মি. ওবামা। দেশটির কংগ্রেসে তার ভেটো খারিজ করে দেয়ার জন্যে যে ভোটাভুটি হয়েছে তাতে সিনেটে বিলটির পক্ষে ভোট দেন ৯৭ জন আর বিপক্ষে মাত্র একজন। আর হাউজ অব রিপ্রেসেন্টেটিভসে পক্ষে ৩৪৮জন ভোট দেন, বিপক্ষে ভোট পড়ে ৭৭টি। নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে ডেমোক্রেট দলের সিনেটর রিচার্ড ব্লুমেন্থাল বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ভোট দিয়েছেন তিনি। তিনি বলছেন, এই পরিবারগুলো কোনদিনই নিজেদের প্রিয়জনদের ফিরে পাবেনা। কিন্তু তাদের ন্যায়বিচার পাবার অধিকার আছে। আর সেজন্যই তিনি প্রেসিডেন্টের ভেটোকে খারিজ করে দেবার জন্য ভোট দিয়েছেন। এখন দেশটিতে এই আইন পাস হয়ে গেল যাতে নাইন ইলেভেনের এর সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারগুলো চাইলে সৌদি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে। সেদিন চারটি যাত্রীবাহী বিমান ছিনতাই করেছিলো সন্ত্রাসীরা। বিমানগুলোকে ইচ্ছাকৃত ভাবে সংঘর্ষ ঘটানো হয়। যার মধ্যে দুটি বিমান নিউ ইয়র্কের টুইন টাওয়ারের সাথে ইচ্ছাকৃত ভাবে সংঘর্ষ ঘটানো হলে ১১০ তলা দুটি ভবন মাটির সাথে মিশে যায়। ঐ হামলায় সেদিন দু ঘণ্টার কম সময়ে প্রায় তিন হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। এদিকে, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ কে বরাবরই হুশিয়ারি দিয়েছেন যে এই আইনটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বয়ে আনবে। কারণ এর ফলে রীতি অনুযায়ী অন্য দেশের সরকারী কর্মকর্তাদের বিচারের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে যে দায়মুক্তি দেয়া হয়, সেটি আর থাকবে না। ফলে অন্য দেশে কর্মরত মার্কিন বাহিনী বা কর্মকর্তাদেরও একই ভাবে বিচারের আওতায় আনার ঝুঁকি তৈরি হবে। অন্যদিকে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে সৌদি বাদশাহের পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, বিলটি পাস হলে সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রে ৭৫ হাজার কোটি ডলারের ব��্ড এবং অন্যান্য বিনিয়োগ তুলে নেবে। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস প্রথমবারের মত প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার একটি ভেটোকে খারিজ করে দিয়েছে। +text: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের বিজয়ী প্রার্থীরা শপথ নেবেন না বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান। মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, "আমরা নির্বাচনের ফলাফলই প্রত্যাখ্যান করেছি, শপথ কী নেব আমরা? সিদ্ধান্ত তো হয়ে গেছে।" এবারের নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন আসনে যারা প্রার্থী ছিলেন, তাদের অনেকেই যোগ দিয়েছিলেন। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার বিষয়টি নিয়ে এই প্রার্থীদের অনেকের মধ্যেই মিশ্র অভিমত লক্ষ্য করেছেন বিবিসি সংবাদদাতা আকবর হোসেন। এদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন যে নির্বাচন থেকে ঐক্যফ্রন্টের সরে আসা উচিত ছিল ভোলা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা কার প্রার্থী অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেছেন যে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর পক্ষে ছিলেন। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকা, প্রচারণার ক্ষেত্রে অনিয়ম, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের আচরণে নিরপেক্ষতার অভাব - এমন বিভিন্ন কারণে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর পক্ষপাতী ছিলেন বলে জানান মি. আহমেদ। তবে সিরাজগঞ্জ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কারী রুমানা মোরশেদ কনকচাঁপা বিবিসি'কে বলেন যে নির্বাচনী লড়াইয়ে শেষপর্যন্ত থাকার পক্ষেই ছিলেন তিনি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন তারা নির্বাচন ট্রাইবুন্যালে তাদের আনা অভিযোগের স্বপক্ষে ভোট জালিয়াতির প্রমাণ সহ মামলা দায়ের করবেন। আরো পড়তে পারেন: পশ্চিমা দেশের মোলায়েম প্রতিক্রিয়ায় আশাহত বিরোধীদল নতুন জাতীয় সংসদে কারা হতে পারবে বিরোধী দল? নির্বাচনে ভরাডুবি নিয়ে বিএনপির তৃণমূলে হতাশা মহাজোটে আছে, মহাজোটেই থাকতে চায় জাতীয় পার্টি এক নজরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ এক বৈঠক শেষে জানিয়েছেন যে নির্বাচনে বিজয়ী ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন না। +text: গ্রামবাসীরা যীশু খ্রিস্টের জন্মের ঘটনার প্রতিরুপ তৈরি করেছেন এভাবেই খ্রিস্ট ধর্মের অনুসারীরা যিশু খ্রিস্টের এই জন্মতিথি উদযাপন করেছে নানা আয়োজনের মধ্য দিয��ে। বাংলাদেশে খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা খুব বেশি নয়। তারপরেও খ্রিস্টান অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে সাধারণ পরিবারগুলো কিভাবে উদযাপন করেছ এই উৎসব? সেটি দেখতে ঢাকার কাছে নবাবগঞ্জের বান্দুরায় খ্রিস্টান অধ্যুষিত একটি এলাকায় গিয়েছিলাম। সেখানে বাড়িতে বাড়িতে ঢোল আর গানবাজনাই জানান দিচ্ছিলো যে এখানকার খ্রিস্টান পরিবারগুলোতে উৎসব চলছে। তবে বড়দিন উদযাপনের সূচনা হয়েছিলো আসলে রোববার মধ্যরাতে, গীর্জা ও উপাসনালয়ে প্রার্থনার মধ্য দিয়ে। ১৭৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত বান্দুরার হাসনাবাদ গীর্জার ফাদার ম্যাক্সওয়েল আলেকজান্ডার টমাস বলছেন, এবারের বড়দিনে তার গীর্জায় প্রার্থনায় অংশ নিয়েছে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রায় আড়াই হাজার মানুষ। তিনি বলেন, "এবার খুব শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠান করছি। সবাই মিলে কীর্তন করেছি। নাচ গান করেছি। শান্তিপূর্ণভাবে জীবন যাপন করতে চাই সেজন্য প্রার্থনা করেছি।" তিনি বলেন, সম্প্রতি পোপ বাংলাদেশ সফর করে গেছেন বলে তার প্রতিফলনও রয়েছে এবারের উৎসবে। ফাদার ম্যাক্সওয়েল আলেকজান্ডার টমাস তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী এই বান্দুরা এলাকায় সাতটি গ্রামে সাড়ে তিন হাজার খ্রিস্টান রয়েছে। এছাড়া মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থেকে শুরু করে নবাবগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ১৮টি গ্রাম রয়েছে খ্রিস্টানদের। পোপের বাংলাদেশ সফরে উজ্জীবিত এসব খ্রিস্টান পরিবারে বড়দিন উপলক্ষে এখন রীতিমত উৎসব চলছে। খ্রিস্টান একটি পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলার সময় পরিবারটির একজন সদস্য দিনা গোমেজ বলেন, সকালে গীর্জা থেকে এসে কেক ও পিঠা খাই। আত্মীয়স্বজন আসে এবং তাদের নিয়ে খুব মজা হয়। তিনি বলেন, "ঘর সুন্দর করে সাজাই, ক্রিসমাস ট্রি সাজাই, আত্মীয়স্বজন সবাই একসাথে হয়ে উৎসব পালন করি।" ভারতীয় সৈন্যরা যেভাবে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে নারীদের নিয়ে জাপানে উত্তর কোরিয়া ফ্যান ক্লাব উৎসবের এ আমেজ দেখা যাচ্ছিলো প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই,অনেককেই দেখা গেছে নতুন জামা কাপড় পরে প্রতিবেশীদের বাড়ি যাচ্ছেন, কেউবা উৎসব করছেন নিজ বাড়ির আঙ্গিনাতেই। রাস্তার পাশে অনেকে পসরা সাজিয়েছেন মেলার মতো করে। এ আনন্দ উদযাপন যাতে নির্বিঘ্নেই হয় সেজন্য প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকেও তৎপর দেখা গেছে ওই এলাকায়। কিন্তু ওই এলাকায় খ্রিস্টানদের এমন আয়োজন বা উদযাপন নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম কিংবা অন্যদের মধ্যে কেমন প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে, জানতে চাইলে ফাদার ম্যাক্সওয়েল আলেকজান্ডার টমাস বলেন, বান্দুরায় তারা সব ধর্মের মানুষ এক পরিবারের মতোই। ১৭৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত বান্দুরার হাসনাবাদ গীর্জা পরে বড়দিনের এ উদযাপন সম্পর্কে স্থানীয় মুসলিমদের মনোভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে স্থানীয় চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম বলেন, "বড়দিনের আনন্দ সবাই ভাগাভাগি করে নেই আমরা। গির্জায় যত অনুষ্ঠান হোক আমরা আমন্ত্রণ পাই ও সেখানে যাই।" বান্দুরায় খ্রিস্টান পল্লীর মতো এমন একই ধরনের আয়োজন ছিলো রাজধানী ঢাকা ছাড়াও পাবনা, নাটোরসহ বিভিন্ন জেলার খ্রিস্টান পল্লী গুলোতে। ক্রিসমাস ট্রি এবং বাড়িঘর ও গীর্জায় আলোকসজ্জা ছাড়াও ঢাকার পাঁচ তারকা হোটেলগুলোতেও চলছে বড়দিনের বিশেষ আয়োজন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ সোমবার পালিত হয়েছে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন। +text: মাশরাফি বিন মুর্তজা তবে স্টেডিয়ামের বাইরে ভিড় করা ক্রিকেট ভক্তদের কথা বলার বিষয় এই খেলা নয় বরং হয়ে উঠেছে ক্রিকেট তারকাদের রাজনীতিতে আসা না আসার প্রসঙ্গটি। বিশেষ করে মাশরাফি বিন মুর্তজা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন সংগ্রহ নিয়ে ক্রিকেট ভক্তদের মধ্যে দেখা গিয়েছে নানা ধরণের প্রতিক্রিয়া। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জান্নাতুল নাইম শাওলিন ক্রিকেটারদের রাজনীতিতে জড়ানোর বিষয়টিকে নেতিবাচক বলে মনে করেন। তিনি বলেন, "আমার মনে হয়না ক্রিকেটাররা রাজনীতিতে আসলে কোন ভাল করতে পারবে। তারা ক্রিকেট নিয়েই যদি থাকে, তাহলে তারা ভাল করতে পারবে। আর তারা যদি রাজনীতিতে জড়িয়ে যায় তাহলে অনেক কম্প্লিকেটেড হয়ে যাবে। যে তারা খেলাটা দেখবে নাকি রাজনীতিটা সামলাবে। তাই আমার মনে হয় তারা রাজনীতিতে না আসলেই ভাল" তবে ভিন্ন ভাবে ভাবছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী শেখ সাকিব ফেরদৌস। তার মতে তরুণ প্রজন্মকে রাজনীতিতে উদ্বুদ্ধ করতে ক্রিকেটাররা বড় ধরণের ভূমিকা রাখতে পারবে। তিনি বলেন, "এই ক্রিকেটারটা নতুন প্রজন্মের জন্য একটা আইডল। সবাই তাদেরকে খুব ফলো করে। তারা তরুণ প্রজন্মের মনের ভাষাটা বোঝে, তারা কি চায় সেটা জানে, এসব নিয়ে তারা সংসদে আলোচনা করতে পারে। তাছাড়া রাজনীতির প্রতি তরুণ প্রজন্মের যে অনাগ্রহ, সেটা থেকে তাদেরকে বের করে আনতে এই ক্রিকেটারদের রাজনীতিতে আসাকে আমি ইতিবাচক-ভাবেই দেখছি।" আরও পড়তে পারেন: আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র নিলেন মাশরাফি তারকা ক্রিকেটারদের ফেসবুক পাতা চালানো কতটা কঠিন? মাশরাফির অবসর ভাবনা: ক্রিকেট নাকি রাজনীতি? এতদিন সংসদ নির্বাচনের হাওয়া সংগীত ও রূপালি জগতে বয়ে গেলেও এখন তার ছোঁয়া লেগেছে ক্রিকেট মাঠে। আজ ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ক্যাপ্টেন মাশরাফির মনোনয়নপত্র সংগ্রহ যেন সেই ইঙ্গিত দেয়। খেলার ক্যারিয়ারের মধ্যেই হঠাৎ রাজনীতিকে কেন বেছে নিলেন এই ক্রিকেট তারকা। এ বিষয়ে মিডিয়ার সামনে মুখ খোলেননি তিনি। তবে আওয়ামী লীগের প্রেস উইং জানিয়েছে যে, নিজ জেলা নড়াইল-২ আসনে প্রার্থিতার জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর শহরের উন্নয়নে কাজ করার কথা জানিয়েছেন মাশরাফি। শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম। মাশরাফির রাজনীতিতে আসা নিয়ে বিসিবি কি বলছে? শ্রীলঙ্কার সানাথ জয়সুরিয়া, খেলোয়াড় জীবনেই রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার উদাহরণ সৃষ্টি করেছিলেন। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেটে এই ঘটনা এবারই প্রথম। বিশ্বকাপের আগমুহূর্তে অধিনায়ক মাশরাফি বা অন্য কোন ক্রিকেট খেলোয়াড়ের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে বিসিবির কি কোন বিধিনিষেধ রয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে বিসিবির মুখপাত্র জালাল ইউনুস বলেন, "মাশরাফি তার ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছেন। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের পর তিনি খেলা থেকে রিটায়ার করবেন। এটা কোন নিয়ম নাই যে কোন ক্রিকেটার রাজনীতি করলে খেলতে পারবেন না"। তার মতে, "এটা যার যার সাংবিধানিক অধিকার। উনি যদি মনে করেন যে, রাজনীতির পাশাপাশি তিনি খেলাতেও পারফর্ম করতে পারবেন, তাহলে আমাদের কোন নিয়ম নাই যে আমরা তাদেরকে কোন বাঁধা দিতে পারবো। তাছাড়া মাশরাফিকে নির্বাচনী প্রচারণার জন্য এক মাস দেড় মাস ব্যস্ত থাকবেন। বাকিটা তিনি ম্যানেজ করে নেবেন।" সাকিব আল হাসান। সাকিব আল হাসানের পরিকল্পনা কি? এদিকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহের খবরগুলোতে মাশরাফির সাথে সাকিব আল হাসানের নামও উঠে এসেছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। পরে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে কথা বলে সরে আসেন বলেও খবর প্রকাশ হয়। এ বিষয়ে বিবিসি বাংলার পক্ষ থেকে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি। ���বে কদিন আগে বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি জানিয়েছিলেন যে ক্রিকেট ক্যারিয়ারের বাইরে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনও কোন পরিকল্পনা তার নেই। সাকিব আল হাসান বলেন, "আমি এখনও কোন লক্ষ্য তৈরি করিনি। আমি ওইভাবে আমার লাইফটাকে চালাইনা। বেশি একটা চিন্তা করিনা। যেভাবে আসছে, সেভাবেই পার করছি। চেষ্টা করছি নিজেকে কিভাবে বেটার করা যায়। এজন্য আমি কোন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করিনা"। তিনি বলেন, "অনেকগুলো অপশন আছে আমার কাছে। যেটা আমার কাছে মনেহয় নিলে ভাল হবে। যখন খেলার ক্যারিয়ার শেষ হবে, তখন সিচুয়েশন অনুযায়ী বুঝতে পারবো যে কোনটা বেছে নিলে আমার জন্য ভাল হবে।" বিবিসি বাংলার প্রতিবেদক সাকিবের সাক্ষাৎকার নিতে তার বাড়ি মাগুরায় যায়। সেখানে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে সাকিব আল হাসান নির্বাচন করবেন এমন কিছু জানা যায়নি। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে চলছে বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ের সিরিজ নির্ধারনী টেস্ট ম্যাচ। +text: ইসরায়েলে ধর্মীয় উৎসবে পদদলিত হয়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ইসরায়েলের সংবাদপত্র হারেটস্ জানিয়েছে, এই ঘটনায় ৩৮ জন নিহত হয়েছে। জরুরি সেবা কর্মীরা উদ্ধার কাজ পরিচালনা করছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই ঘটনাকে 'বড় বিপর্যয়' হিসেবে বর্ণনা করেছেন। মেরন পর্বতের পাদদেশে লাগ বি'ওমের নামের এই ধর্মীয় উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয়। করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর থেকে ইসরায়েলে এটি হচ্ছে সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। জরুরি সেবা বিভাগ জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় ৩৮ জনের অবস্থা সংকটাপন্ন। টুইটারে এক বার্তায় জরুরি সেবা বিভাগ বলছে, আহতদের উদ্ধার করার জন্য তারা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: প্রথম দিকে মনে হয়েছিল, উৎসবস্থলে কোন স্থাপনা ভেঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু পরবর্তীতে জরুরি সেবা বিভাগ জানিয়েছে, সেখানে পদদলিত হবার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের সূত্রগুলো হারেটস্ পত্রিকাকে জানিয়েছে, উৎসবে অংশগ্রহণকারী কিছু মানুষ পা পিছলে পড়ে যাবার মাধ্যমে ঘটনার সূত্রপাত হয়। এরপর তাদের উপর আরো অনেকে এসে পড়ে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, "এই ঘটনা মুহূর্তের মধ্যে ঘটে যায়। মানুষজন একজন আরেকজনের উপর এসে পড়ে যায়। এটা ছিল একটা বিপর্যয়।" আরেকজন ভেবেছিলেন, এটি একটি বোমা হামালার সতর্কবার্তা ছিল। তিনি বলেন, "কেউ ভাবতে পারেনি যে এই ধরণের ঘটনা ঘটতে পারে। আনন্দ শোকে পরিণত হয়েছে।" প্রতিবছর এই অনুষ্ঠানে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়। এর আগে কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিপুল মানুষের উপস্থিতির কারণে উৎসবস্থলে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে বিধি-নিষেধ আরোপ করা সম্ভব হবে না। প্রতি বছর অর্থোডক্স ইহুদিরা মেরন পাহাড়ের পাদদেশে লাগ বি'ওমের নামের এই ধর্মীয় উৎসবে অংশ নেয়। আগুন জ্বালানো, প্রার্থনা করা এবং নাচের মধ্যদিয়ে এই ধর্মীয় উৎসবটি পালন করে অর্থোডক্স ইহুদিরা। টাইমস অব ইসরায়েলের খবর অনুযায়ী, এই উৎসবে অংশ নিতে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত প্রায় এক লাখ মানুষ জড়ো হয়েছে। এছাড়া শুক্রবারে আরো মানুষের অংশ নেবার কথা ছিল। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে গত বছর এই ধর্মীয় উৎসবের ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ ছিল। কিন্তু ইসরায়েলের সফল টিকাদান কর্মসূচীর কারণে সম্প্রতি বহু বিধি-নিষেধ তুলে নেয়া হয়েছে। ইসরায়েলে একটি ধর্মীয় উৎসবে পদদলিত হয়ে বহু মানুষ হতাহত হয়েছে। ইসরায়েলের ন্যাশনাল এমারজেন্সি সার্ভিস মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করলেও ঠিক কতজন মারা গেছে - সেটির হিসেব দেয়নি। +text: ব্রিটেনে গভীর রাজনৈতিক বিভক্তি তৈরি করেছে ব্রেক্সিট ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে প্রত্যাহার বিলটির পক্ষে পার্লামেন্টে ভোট দেন ৩৫৮ জন। বিপক্ষে ভোট পড়ে ২৩৪টি। তবে এই বিলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে একটি আনুষ্ঠানিক বাণিজ্য চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত যে অন্তবর্তীকালীন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, সেটি কোনভাবেই ২০২০ সালের বেশি বাড়ানো যাবে না বলে সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, 'ব্রেক্সিট কার্যকর করার পথে ব্রিটেন এখন আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল।' বিরোধী লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বিলটির বিপক্ষে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু তার দলেরই ছয় জন এমপি তা অমান্য করে বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। অবশেষে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে বেরিয়ে এলো ব্রিটেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আশা করছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তি ২০২০ সালের মধ্যেই করা সম্ভব। তবে সমালোচকরা এই সময়সীমাকে অবাস্তব বলে বর্ণনা করেছেন। কনসারভেটিভ পার্টি এ মাসের নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পর সহজেই এই বিলটি পাশ হবে বলে ধ��রণা করা হচ্ছিল। সরকার বলছে, এই বিলটিকে ৩১শে জানুয়ারির আগেই তারা আইনে পরিণত করবেন। ব্রেক্সিট কী? 'ব্রিটিশ এক্সিট' নামটিকে সংক্ষেপে ডাকা হচ্ছে ব্রেক্সিট নামে। এটি হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাবার প্রক্রিয়া। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কী? ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) হচ্ছে ২৮টি দেশের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক জোট। এই জোটের সদস্য দেশগুলো নিজেদের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য করে থাকে, এসব দেশের নাগরিকরা জোটভুক্ত যেকোন দেশে গিয়ে থাকতে ও কাজ করতে পারেন। (সদস্যদেশগুলোর নামের তালিকা এখানে দেখতে পারেন) ১৯৭৩ সালে যুক্তরাজ্য ইইউতে যোগ দেয়। তখন এটির নাম ছিল - ইইসি ( ইউরোপিয়ান ইকনোমিক কম্যুনিটি)। গত তিন বছর ধরেই ব্রেক্সিট নিয়ে ক্লান্তিকর টানাপেড়েন চলছে ব্রিটেনের রাজনীতিতে ইইউ ছাড়ছে কেনযুক্তরাজ্য? ৪০ বছরের বেশি সময় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাথে থাকার পর ২০১৬ সালের ২৩শে জুন একটি গণভোট নিয়েছিল যুক্তরাজ্য। সেখানে সেদেশের নাগরিকদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল - যুক্তরাজ্যের কি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাথে থাকা উচিত নাকি উচিত না? ৫২ শতাংশ ভোট পড়েছিল ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে,আর থাকার পক্ষে ছিল বাকি ৪৮ শতাংশ ভোট। কিন্তু সেই ভোটের ফলাফলের সাথে সাথেই ব্রেক্সিট হয়ে যায়নি। এই বিচ্ছেদ ঘটবে আগামী ৩১শে জানুয়ারি। অবশেষে সামনের বছরের ৩১শে জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছে যুক্তরাজ্য। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে শুক্রবার এজন্যে আনা বিলটি বড় ভোটের ব্যবধানে পাস করেছেন এমপিরা। +text: মোহাম্মদ হাদিস উদ্দন তিনি বলছিলেন, করোনাভাইরাসের কারণে তিনি এখন যে ধরনের সমস্যায় পড়েছেন, তার ৩০ বছরের পেশাজীবনে এরকম সমস্যায় পড়েননি। ''প্রতিদিন গাড়ী বের করার পর অনেক জায়গায় ঘুরলে একটা ভাড়া মেলে। তাও যাত্রীরা ২০০ টাকার ভাড়া বলেন ১০০ টাকা। তাকে না দিলে দেখা যাবে, এই ১০০ টাকাও পেলাম না,'' তিনি বলেন। ''সারাদিন গাড়ী চালিয়ে দেখা যায়, জমার টাকাই (প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা) ঠিক মতো ওঠে না। কোনদিন ঘরে ২০০, কোনদিন ১০০ টাকা নিয়ে যেতে পারি।'' লকডাউন আর রোজগার এবারের লকডাউনে একটানা ১৪ দিন তিনি ঘরে বসে ছিলেন। সেই সময় তার কোন আয়-রোজগার ছিল না। গত বছর একটানা দুইমাস তাকে ঘরে বসে কাটাতে হয়েছে। সেই��ার সরকারি-বেসরকারি সহায়তা পেলেও এবার কোন সাহায্যই পাননি। তার কাছে জানতে চাইলাম, তিনি কখনো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন কিনা? মি. হাদিস উদ্দিন দাবী করছেন, তিনি কখনোই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি। যদিও তিনি কখনো এজন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করেন নি। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন করোনাভাইরাস নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন বদলে যাচ্ছে কোভিড ভাইরাস, যা জেনে রাখা জরুরি করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন নিয়ে আপনার যত প্রশ্ন ও তার উত্তর করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন টিকাদানে আপনার দেশের অবস্থান কোথায়? এক কক্ষের এই বাসায় মোঃ হাদিসউদ্দিনে ছয় সদস্যের পরিবারের বসবাস তবে গত বছর তার ঠাণ্ডা লেগেছিল, কয়েকদিন পরেই ঠিক হয়ে যায়। ভালো হয়ে যাওয়ায় তিনি পরীক্ষা করানোর দরকার বোধ করেননি। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংকট শুরু হওয়ার শ্রমজীবী অনেক মানুষের নানারকম প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েছেন। তাদের অনেকে চাকরি হারিয়েছেন, অনেকের আয়-রোজগার কমে যাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। এরকম সংকটে পড়েছেন ঢাকার কয়েক হাজার সিএনজি চালক, যাদের একদিকে দিনের পর দিন যেমন বসে থাকতে হয়েছে, তেমনি ছোঁয়াচে এই রোগের কারণে যাত্রী পরিবহনও অনেক কমে গেছে। আবার নানা শ্রেণী পেশার যাত্রী বহন করতে গিয়ে নিজেদেরও ঝুঁকির মুখে পড়তে হচ্ছে। 'দেশে করোনা বলে কিছু নাই' আগের সিএনজি চালানোর সঙ্গে বর্তমান সময়ের পার্থক্য করতে গিয়ে হাদিস উদ্দিন বলছেন, ''এখন অনেকে সচেতন হয়েছে, মাস্ক পড়েন, স্যানিটাইজার ব্যবহার করেন। আবার অনেকের ভাব দেখে মনে হয়, দেশে করোনা বলে কিছু নাই।'' তিনি নিজেও ভয়ে থাকেন, কোন ভাবে নিজে সংক্রমিত হয়ে পড়েন কিনা, যা তার মাধ্যমে পরিবারের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। খিলগাঁয়ে মি.হাদিস উদ্দিনের সিএনজি গ্যারেজ, সেখানে গিয়ে তার মতো অনেক চালকের সঙ্গে দেখা হল। তাদের সবার গল্প অনেকটা একই রকম। সংকটে পড়েছেন ঢাকার কয়েক হাজার সিএনজি চালক, যাদের একদিকে দিনের পর দিন যেমন বসে থাকতে হয়েছে, তেমনি ছোঁয়াচে এই রোগের কারণে যাত্রী পরিবহনও অনেক কমে গেছে। গ্যারেজে অনেক সিএনজি এখনো পড়ে রয়েছে, চালক নেই। এখানকার পরিচালক রিফায়েতউল্লাহ বলছেন,শুধু চালক নয়, ক্ষতির মুখে পড়েছেন মালিকরাও। ''করোনা যেই সময় বেশি আছিল, আমাদের রিক্সা নিয়াও গাড়ী ছাড়তে হয়েছে। কারণ ড্র���ইভিং না খেয়ে থাকে, বাজার করতে পারছে না। রাস্তায় সার্জেন্ট মামলা করে। তারপরেও আমরা গাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছি।'' তিনি জানান, তাদের ৫২ টি সিএনজির অর্ধেকের বেশি এখন পড়ে থাকে। কারণ চালক নেই, অনেকে দেশে গিয়ে আর আসেনি। এখান থেকে মি. হাদিস উদ্দিনের সঙ্গে তার বাসার উদ্দেশে রওনা দিলাম। গ্যারেজ থেকে বাসা বেশি দূরে নয়। সংসার চালানো কঠিন দক্ষিণ গোঁড়ানের একটি টিন শেড একতলা ভবনের একটি কক্ষে মোঃ হাদিস উদ্দিন বসবাস। এই একটি রুমেই তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে, এক মেয়েকে নিয়ে বসবাস করেন। তার স্ত্রী মোসাম্মাৎ রহিমা বলছেন, করোনাভাইরাস সংকট শুরু হওয়ার পর তার জন্য সংসার চালানো এখন অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। ''তাকে (হাদিস উদ্দিন) নিয়ে অনেক চিন্তা করতে হয়। উনি বাইরে যায়, করোনাভাইরাসের ডর। আগের চেয়ে ইনকাম কম হয়। আগে ভালো টাকা কামাইছে, এখন টাকা পয়সা কামাইতে পারতেছেন না। এখন অনেক কঠিন হয়ে গেছে সংসার চালানো। '' ''সারাক্ষণ এই ভয়ে থাকি, তিনি কি রুগী লইলেন কিনা, আক্রান্ত হইলেন কিনা,'' বলছিলেন মিসেস রহিমা। মোঃ হাদিস উদ্দিন বলছেন, প্রতিদিনের আয়ের ওপরেই তাদের জীবিকা নির্ভর করতে হয়। ফলে নিজে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি নিয়েও তাদের প্রতিদিন কাজে বের হতে হয়। কিন্তু ছোঁয়াচে এই রোগের কারণে যাত্রী সংখ্যা অনেক কমে গেছে। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর একজন যাত্রী মেলে। মোহাম্মদ হাদিস উদ্দিন ঢাকায় ভাড়ায় গাড়ি চালাচ্ছেন ১৯৯১ সাল থেকে। বেবি ট্যাক্সি দিয়ে তার পেশাজীবন শুরু হয়েছিল, এখন অনেক বছর ধরে সিএনজি চালাচ্ছেন। +text: মংডু এলাকায় মিয়ানমার বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার কর্মকর্তারা বলছেন, গত বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা মুসলিমদের একটি দল বাঁশ সংগ্রহ করার সময় হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে তাদের হত্যা করা হয়। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী দাবি করছে, হেলিকপ্টার আক্রমণে নিহতরা ওই অঞ্চলের সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সহায়তা দিচ্ছিল। কিন্তু জাতিসংঘের মুখপাত্র এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। এর আগে পাওয়া খবরে ওই ঘটনায় ৭ জন নিহত হয়েছে বলে বলা হয়েছিল। কিন্তু এখন কর্মকর্তারা বলছেন, এ আক্রমণে প্রায় ৩০ জন নিহত হয়েছে বলে তারা খবর পেয়েছেন, তবে তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: বিশ্বের বৃহত্তম নির্বাচন যেভাবে আয়োজন করছে ভারত প্যারোল ও জামিনের মধ্যে পার্থক্য কী? তারেক ন���য়ে ব্রিটেনের জবাবে কী বলছে বাংলাদেশ সীমান্ত প্রহরায় বর্মী সেনা বিবিসির সংবাদদাতা নিক বিক জানাচ্ছেন, তিন মাস আগে রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সহিংসতা শুরু হবার পর এটাই মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুতর ঘটনা। সর্বশেষ রাখাইন রাজ্যে যে লড়াই চলছে, তা হচ্ছে মূলত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এবং আরাকান বাহিনীর মধ্যে । এই আরাকান যোদ্ধারা জাতিগতভাবে রাখাইন এবং প্রধানত: বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। এ বছরের শুরুর দিক থেকে যুদ্ধের কারণে প্রায় ২০ হাজার বেসামরিক লোককে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে হয়েছে। এর আগে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যে অভিযান চালায় তাতে বহু রোহিঙ্গা হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয় এবং অন্তত ৭ লক্ষ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। অভিযোগ করা হয়, রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের বাহিনী সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিরুদ্ধে গণহত্যার মানসিকতা নিয়ে অভিযান চালিয়েছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট: 'কিছু বললে দা-বটি নিয়ে তেড়ে আসে' 'গোয়েন্দা তথ্য, সরকারি সিদ্ধান্তে' সেন্ট মার্টিনে বিজিবি রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে 'মিয়ানমারকে বাধ্য করা হোক' জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন, গত সপ্তাহে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টার দিয়ে চালানো এক অভিযানে প্রায় ৩০ জন রোহিঙ্গা বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে বলে তারা খবর পেয়েছেন, তবে তা এখনো নিশ্চিত করা যায় নি। +text: কারাবন্দিদের পুর্নবাসনের বিষয়টাকে মাথায় রেখে কারাগারের ভেতর চালু হয়েছে তৈরি পোশাক কারখানা বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে কারাগারের ভেতরে বন্দিদের নিয়ে এমন একটি রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানা এই প্রথমবারের মত করা হলো। এই পোশাক কারখানায় কাজ করার জন্য প্রায় তিনশো বন্দিকে কাপড় সেলাই করার প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে, এবং তাদের তৈরি পোশাক খোলা বাজারে বিক্রি করা হবে বলেও ঠিক হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এজন্যে বন্দিদের বেতনও দেওয়া হবে এবং সেই উপার্জিত অর্থ তারা বাইরে পরিবারের কাছে পাঠাতে পারবেন, অথবা চাইলে কারাবাসের মেয়াদ শেষে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পুরো টাকাটা তুলে নিতে পারবেন। কারখানাটির উদ্বোধন করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেছেন কারাবন্দীরা যাতে ভবিষ্যতে কর্মজীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে সেজন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কারা মহা পরিদর্শক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেছেন, প্রাথমিকভাবে এই কারাখানায় তিন থেকে সাড়ে তিনশ বন্দী কাজ করবেন, এবং তাদের যোগ্যতা এবং দক্ষতা অনুসারে বন্দিরা বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করবেন। ''তাদের পুর্নবাসনের জন্য আমরা তাদের শ্রমজীবী হিসাবে কাজ করার বিষয়টি মাথায় রেখে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। পুর্নবাসন করাতে হলে বাইরে যেসব শ্রম বাজার রয়েছে তার প্রয়োজনীয়তার নিরিখে আমরা তাদের তৈরি করছি।'' ''নারায়ণগঞ্জ জেলখানা থেকে বেরিয়ে বন্দিদের বিভিন্ন গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করার সুযোগ বেশি, কারণ গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ এলাকায় গার্মেন্টস কারখানা বেশি। এই কনসেপ্ট থেকেই তাদের পুর্নবাসনে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে,'' বলছেন মিঃ ইফতেখার উদ্দিন। তিনি বলছেন, যদিও জেলকোড অনুযায়ী এখন পর্যন্ত বন্দিরা টাকার অংকে পারিশ্রমিক পান না, কিন্তু শীঘ্রই সেই নিয়মে সংশোধনী আনা হচ্ছে। কারাবন্দিদের দিয়ে এর আগে ছোট পরিসরে এরকম আরো দুটি পোশাক কারখানা গাজীপুর এবং কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার টুতে করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদী বন্দিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রশিক্ষক হিসেবে ইউনিট চালানোর দায়িত্ব দেয়া হবে। আর স্বল্পমেয়াদী বন্দিদেরও প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজে লাগানো হবে। তাদের জন্যও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। তবে, কারখানাটিকে রপ্তানিমুখী বলা হলেও, কারা মহাপরিদর্শক জানিয়েছেন, এখানকার পোশাক রপ্তানি করতে আরও কিছু সময় লাগবে। কারাবন্দিদের কাপড় সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ''পোশাক রপ্তানিমুখী করতে গেলে তার কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা যখনই কোয়ালিটি কন্ট্রোলে বুঝব যে বাইরে পাঠানোর মত মান অর্জিত হয়েছে তখনই সেটা করা হবে। তবে রপ্তানির জন্য কিছু সরকারি নিয়মকানুনও আছে। সেগুলোও আমাদের দেখতে হবে।'' তিনি বলছেন মানসম্মত পোশাক তৈরি নিশ্চিত করা গেলে এবং স্থানীয় বাজারে বিক্রির পর বাড়তি পণ্য থাকলে তা বাইরে রপ্তানি করা সম্ভব হবে। এই কারখানার আয়তন ছয় হাজার বর্গফুট। এই পোশাক কারখানাটির সঙ্গে এক হাজার বর্গফুটের একটি জামদানি পণ্য উৎপাদন কেন্দ্রও তৈরি করা হয়েছে। কারখানাটির অর্থ সংস্থান কিভাবে করা হয়েছে? নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া এই পোশাক কারখ���নাটি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলেন । "আমাদের লক্ষাধিক ইঁট লেগেছে, সেটি দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ ইঁটভাটা মালিক সমিতি, সিমেন্ট দিয়েছে লাফার্জ এবং ক্রাউন সিমেন্ট, রড, টিন ও টাইলস দিয়েছেন তিনজন ভিন্ন ভিন্ন মানুষ। সবাই সাহায্য করেছে, কিন্তু আমরা কারো কাছ থেকেই কোন নগদ অর্থ গ্রহণ করিনি," বলছিলেন রাব্বী মিয়া। বেসরকারি উদ্যোগ ছাড়াও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও বিকেএমইএ কারিগরি সহায়তা দিয়েছে এই কাজে। প্রাথমিকভাবে এখানকার তৈরি পোশাক এবং জামদানি, আড়ং এর মত বড় বুটিক শপগুলোতে বিক্রি করা হবে বলে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের ভেতরে একটি তৈরি পোশাকের কারখানা স্থাপন করেছে। +text: বিশ্বের নানা দেশে বিষণ্ণতা, দুশ্চিন্তা, মানসিক অবসাদের মত অসুস্থতার চিকিৎসায় এলএসডি'র কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন মনোচিকিৎসক ও রসায়নবিদরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐ ছাত্রের মৃত্যু হয় গত ১৫ই মে ঢাকা মেডিকেল কলেজে। সে সময় তার পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এর সপ্তাহ খানেক পর তার পরিবারের পক্ষ থেকে ঐ ছাত্রের লাশ শনাক্ত করা হয়। এরই মধ্যে বাংলাদেশের সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে ঐ ছাত্রর গলা দিয়ে রক্ত ঝরতে দেখা যায়। ভিডিওর শেষভাগে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি রিকশায় উঠতে দেখা যায় তাকে। পুলিশের ভাষ্যমতে, ঐ ছাত্র বন্ধুদের সাথে মাদক এলএসডি সেবন করে একজন ডাব বিক্রেতার দা নিয়ে নিজেই নিজের গলায় আঘাত করেন। পুলিশের সন্দেহ, এলএসডি'র প্রভাবেই ভুক্তভোগী ছাত্র নিজেকে এভাবে আঘাত করেছিলেন। এরকম ঘটনার পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, মানুষের জন্য এলএসডি কতটা ক্ষতিকর? এলএসডি কী? যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনস্থ মাদক বিষয়ক গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ড্রাগ অ্যাবিউজের তথ্য অনুযায়ী, ডি-লাইসার্জিক অ্যাসিড ডায়েথিলামাইড বা এলএসডি রাসায়নিক সংশ্লেষণের মাধ্যমে তৈরি একটি পদার্থ যা রাই এবং বিভিন্ন ধরণের শস্যের গায়ে জন্মানো এক বিশেষ ধরণের ছত্রাকের শরীরের লাইসার্জিক অ্যাসিড থেকে তৈরি করা হয়। এটি স্বচ্ছ, গন্ধহীন একটি পদার্থ। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের মতে এটি পাউডার, তরল, ট্যাবলেট বা ক্যাপসুলের আকারে পাওয়া যায়। এলএসডি'কে 'সাইকাডেলিক' মাদক হিস���বে চিহ্নিত করা হয়। এই ধরণের মাদকের প্রভাবে সাধারণত মানুষ নিজের আশেপাশের বাস্তবতাকে ভিন্নভাবে অনুভব করে এবং কখনো কখনো 'হ্যালুসিনেট' বা অলীক বস্তু প্রত্যক্ষও করে থাকে। আরো পড়তে পারেন: পাউডার, তরল, ট্যাবলেট বা ক্যাপসুলের আকারে পাওয়া যায় এলএসডি উনিশশো আটত্রিশ সালে প্রথমবার এলএসডি সংশ্লেষণ করা হয়। এরপর ১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকে নানা ধরণের মানসিক রোগের চিকিৎসায় এলএসডি ব্যবহারের জন্য প্রচারণা চালান গবেষকরা। সেসময় এই বিষয়ে বহু বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালিত হয়, আয়োজিত হয় একাধিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনও। উনিশশো আটত্রিশ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এলএসডিসহ সব ধরণের সাইকাডেলিক ড্রাগ নিষিদ্ধ করে। এরপর ১৯৭১ সালে জাতিসংঘ চিকিৎসা কাজে এলএসডি ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলে এই বিষয়ে গবেষণায় ভাটা পড়ে। তবে বিশ্বের নানা দেশে বিষণ্ণতা, দুশ্চিন্তা, মানসিক অবসাদের মত অসুস্থতার চিকিৎসায় এলএসডি'র কার্যকারিতা নিয়ে এখনো গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন মনোচিকিৎসক ও রসায়নবিদরা। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনে ২০১৭ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে আসে যে, চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে নির্দিষ্ট মাত্রায় এলএসডি গ্রহণের ফলে অসুস্থতার কারণে দুশ্চিন্তায় ভুগতে থাকা রোগীদের দুশ্চিন্তা কমে। লন্ডন, বাসেল এবং জুরিখ শহরের ৯৫ জন রোগীর ওপর গবেষণাটি পরিচালনা করেন সুইজারল্যান্ডের বাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিসিন বিভাগের গবেষক মাথিয়াস লিখটি। এলএসডি কেন ক্ষতির কারণ হতে পারে? বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চিকিৎসার প্রয়োজনে বা গবেষণার কাজে চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে নির্দিষ্ট মাত্রায় এলএসডি গ্রহণ করে থাকে মানুষ। তবে এটি মূলত ব্যবহার হয়ে থাকে মাদক হিসেবে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের ভাষ্য অনুযায়ী এটি মানুষের মস্তিষ্কের সেরোটোনিন নামক রাসায়নিকের কার্যক্রম প্রভাবিত করে ব্যবহার, অনুভূতি এবং পারিপার্শ্বিকতা সম্পর্কে ধারণা পরিবর্তন করে। এলএসডি নেয়ার পর সাধারণত মানুষ 'হ্যালুসিনেট' করে বা এমন দৃশ্য দেখে যা বাস্তবে নেই। অনেক সময় অলীক দৃশ্য দেখার কারণে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে থাকে মানুষ। সুইজারল্যান্ডের ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে প্রথমবার এলএসডি সংশ্লেষণ করা সুইস রসায়নবিদ অ্যালবার্ট হফম্যানের ছবি এলএসডি গ্রহণ করে ভুল রাস্তা দে���ে দুর্ঘটনার শিকার হওয়া, বাড়ির জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়া বা অহেতুক আতঙ্কিত হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার বেশ কিছু ঘটনা নথিবদ্ধ রয়েছে। ইউরোপের বিজ্ঞানী এবং গবেষকদের বাণিজ্যিক ওয়েবসাইট রিসার্চগেইট'এ ২০১৭ সালে প্রকাশিত এক গবেষণার তথ্য অনুযায়ী ১৯৫৩ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডায় মোট ৬৪ জনের মৃত্যু হয় এলএসডি গ্রহণের পরবর্তী জটিলতায়। বিষণ্ণতা বা দুশ্চিন্তায় ভোগা ব্যক্তিরা এলএসডি গ্রহণের পর আরো বেশি বিষণ্ণতা বা দুশ্চিন্তায় আক্রান্ত হতে পারেন বলেও উঠে এসেছে অনেক গবেষণায়। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন বলছে, এলএসডি গ্রহণের পর অনেকে মনে করেন যে তিনি সবকিছু পরিষ্কার দেখছেন এবং তার শরীরে অতিমানবিক শক্তি এসেছে। এরকম বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ার ফলেও অনেকে নানা ধরণের দুর্ঘটনা শিকার হতে পারেন। অতিরিক্ত আতঙ্কের কারণে মানুষ অনেক সময় মনে করতে পারে যে সে শীঘ্রই মারা যাবে বা মারা যাচ্ছে। এরকম পরিস্থিতিতেও মানুষ আতঙ্কের বশবর্তী হয়ে নানা ধরণের কাজ করে থাকে যার ফলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আতঙ্কিত হওয়ার পাশাপাশি অতি দ্রুত অনুভূতির পরিবর্তন হওয়ার কারণেও মানুষ মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করতে পারে বলে বলছে ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন। সংস্থাটি বলছে এলএসডি গ্রহণের আগে এটা বোঝা সম্ভব নয় যে আপনার অভিজ্ঞতা কেমন হতে যাচ্ছে। এছাড়া এলএসডি মানুষের শরীরে বিভিন্ন রকম প্রভাব ফেলে থাকে। এলএসডি নেয়ার ফলে মানুষের হৃৎস্পন্দন, রক্তচাপ, শ্বাস-প্রশ্বাসের মাত্রা এবং শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। এছাড়া অনেকের ক্ষেত্রে অনিদ্রা, ক্ষুধামন্দা, অতিরিক্ত ঘাম সহ নানা ধরণের মানসিক সমস্যাও তৈরি হয় বলে জানাচ্ছে ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন। বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: বাংলাদেশের গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে তিন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে যারা অনলাইনে এলএসডি (লাইসার্জিক অ্যাসিড ডায়েথিলামাইড) বিক্রি করতো। +text: দিল্লিতে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অনুরাগ কাশ্যপ পায়েল ঘোষ নামে ওই অভিনেত্রীর অভিযোগ সামনে আসার পর অনুরাগ কাশ্যপের ছবির নায়িকারা অনেকেই পরিচালকের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন, অনুরাগের প্রাক্তন স্ত্রী-রাও পু���নো স্বামীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। অন্য দিকে, অনুরাগ কাশ্যপের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছেন যারা সেই শিবিরের নেতৃত্ব দিচ্ছেন অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত, ভারতের জাতীয় মহিলা কমিশনও অভিযোগকারিণীকে সাহায্য করার প্রস্তাব দিয়েছে। পর্যবেক্ষকরা অনেকেই মনে করছেন, দেশের সাম্প্রতিক রাজনীতি যেভাবে বলিউডে প্রভাব ফেলছে এই বিতর্কেও তার ছায়া পড়ছে। ব্ল্যাক ফ্রাইডে, দেভ ডি বা গ্যাংস অব ওয়াসেপুরের মতো বহু সমাদৃত ছবির পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ ইদানীংকালে বারবার শিরোনামে এসেছেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিভিন্ন নীতির সমালোচনা করে। অভিযোগকারিণী পায়েল ঘোষ অনেক দক্ষিণ ভারতের ছবি ও কিছু বলিউড ফিল্মে অভিনয় করেছেন নরেন্দ্র মোদীর শিক্ষাগত ডিগ্রি কিংবা তার ও তার বাবার বার্থ সার্টিফিকেট দেখতে চেয়েও বিজেপি সমর্থকদের আক্রমণের মুখে পড়েছেন তিনি। কিন্তু এই মুহুর্তে তিনি আলোচনার কেন্দ্রে পায়েল ঘোষ নামে এক অভিনেত্রী তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আনার পর। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মিস ঘোষ বলেন, ২০১৪-১৫ সাল নাগাদ একটি রোল নিয়ে কথা বলতে গেলে নিজের ঘরে ডেকে নিয়ে প্যান্টের জিপ খুলে অনুরাগ কাশ্যপ তার ওপর জোরজবরদস্তি করেন। বেশ কিছু নায়িকার নাম করে না কি এমনও বলেন, ফোন করলেই তারা না কি এসে পরিচালককে তৃপ্ত করে যান। কিন্তু প্রায় পাঁচ-ছবছর আগের এই ঘটনা নিয়ে তিনি এতদিন বাদে মুখ খুললেন কেন? অনুরাগ কাশ্যপের গ্রেপ্তারি দাবি করছেন অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত পায়েল ঘোষ বলছেন, "বহুবার এটা নিয়ে কথা বলতে চাইলেও আমার পরিচিতরা সতর্ক করে দিয়েছিলেন ওরা সাঙ্ঘাতিক লোকজন, আমার ওপর অ্যাসিড হামলা করতে পারে বা এমন কী তুলেও নিয়ে যেতে পারে।" "অন্য অনেককেও ওরা আগে বিপদে ফেলেছে, তাই আমাকেও চুপ থাকতে বলা হয়েছিল।" টুইটারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দপ্তরকেও এই অভিযোগ ট্যাগ করেন তিনি। আর এটা সামনে আমার পরই বলিউড তারকা কঙ্গনা রানাওয়াত - যিনি সম্প্রতি নানা ইস্যুতে ইন্ডাস্ট্রির দিকপালদের একহাত নিচ্ছেন ও আরএসএসের প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেছেন - তিনি অনুরাগ কাশ্যপের গ্রেপ্তারের দাবি তোলেন। কঙ্গনা লেখেন, বলিউড আসলে অনুরাগের মতো এরকম 'যৌন শিকারি'তে ভর্তি। আরো পড়তে পারেন: যৌন নিপীড়নের অভিযোগে দোষী হার্ভি ওয়েইনস্টেইন দিল্লিতে এবার ধর���ষণের শিকার হলেন ৮৬ বছরের বৃদ্ধা ভারতে নির্ভয়া ধর্ষণ ও হত্যাকারী চারজনের ফাঁসি কার্যকর অভিনেত্রী ও বিজেপি এমপি রূপা গাঙ্গুলিও টুইটারে সমর্থন জানান পায়েলকে। জাতীয় মহিলা কমিশনও স্বত:প্রণোদিতভাবে পদক্ষেপ নিতে এগিয়ে আসে। কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা বলেন, "পায়েল ঘোষকে পাল্টা টুইট করে আমি জানিয়েছি এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে পেশ করা হলে কমিশন বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করবে ও পুলিশকেও ব্যবস্থা নিতে বলবে।" আদালতে এই মামলা গড়ালেও কমিশন যে অভিনেত্রীর পাশে আছে, সে কথাও স্পষ্ট করে দেন তিনি। তবে বলিউডে অনুরাগ কাশ্যপের সমর্থনেও এগিয়ে এসেছেন মাহি গিল, হুমা কুরেশি, সায়ামি খেরের মতো তার বহু নায়িকা, রিচা চাড্ডার আইনজীবী তো পায়েল ঘোষকে আইনি নোটিশও পাঠিয়েছেন। পরিচালকের দুজন প্রাক্তন স্ত্রী, কাল্কি কেকলা ও আরতি বাজাজও বিবৃতি দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন - তারা এই অভিযোগের ছিঁটেফোঁটাও বিশ্বাস করেন না। অনুরাগ কাশ্যপের প্রাক্তন স্ত্রী কাল্কি কেকলা মুম্বাইয়ের সাংবাদিক ও বলিউড ওয়াচার লিসা রে বিবিসিকে বলছিলেন, "বলিউডের সবচেয়ে রাজনৈতিকভাবে সচেতন ও সোচ্চার ব্যক্তিদের মধ্যে অনুরাগ কাশ্যপ অগ্রগণ্য। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে তাকে সেটারই দাম দিতে হচ্ছে বা মূল্য চোকাতে হচ্ছে।" "বহুদিন ধরে ছবি বানাচ্ছেন অনুরাগ কাশ্যপ, কিন্তু মনে রাখতে হবে এর আগে কিন্তু কখনও তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তার টিমের কেউ কখনও করেননি।" "আমার ধারণা বলিউডে এখন রাজনীতির অভিঘাত নিয়ে একটা তোলপাড় চলছে, আর তত সফল নন তেমন কোনও কোনও অভিনেত্রী সেই টালমাটাল সময়টারই সুযোগ নিতে চাইছেন।" "মি-টু নিয়ে বছরদুয়েক আগে যখন বলিউডে হইচই চলছিল, তখন বা তার ঠিক পরেও কেন পায়েল ঘোষ এই অভিযোগগুলো সামনে আনেননি এটা নিয়েও কিন্তু প্রশ্ন উঠছে", বলছিলেন লিসা রে। অনুরাগ কাশ্যপের আইনজীবীও দীর্ঘ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, তার মক্কেল এই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগে কতটা ব্যথিত। কিন্তু বলিউডের এই পরিচালক যেভাবে সাম্প্রতিককালে রাজনীতিতে জড়িয়েছেন, তাতে এই সব অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়া তার জন্য খুব সহজ হবে না বলেই পর্যবেক্ষকদের অনেকের ধারণা। বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: ডাকসু'র সাবেক ভিপি নূরের বিরুদ্ধে ফের মামলা 'শীর্ষ ১০জন গ্রহীতা ঋণ খেলাপী হলেই ৩৭টি ব্যাংক মূলধন সংকটে পড়বে' স্ত���রীর মাধ্যমে 'দৈব নির্দেশ' পেয়ে হাতি কিনে আনলেন কৃষক স্বামী ভারতের শীর্ষস্থানীয় ফিল্ম নির্মাতা ও মোদী সরকারের কঠোর সমালোচক বলে পরিচিত অনুরাগ কাশ্যপের বিরুদ্ধে একজন অভিনেত্রী তথা মডেল যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনার পর বিষয়টিকে কেন্দ্র করে বলিউড কার্যত দুভাগ হয়ে গেছে। +text: ইরানের ছোঁড়া মিসাইলেই কি বিমান দুর্ঘটনা ঘটে? ধারণা করা হচ্ছে যে, গ্রেফতার হওয়া ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক অভিযোগ আনা হবে। ফ্লাইট পিএস-৭৫২ বুধবার তেহরান থেকে উড্ডয়নের পর পরই ভূপাতিত করা হয় যাতে ১৭৬ আরোহীর সবাই নিহত হয়। ইরান বলে যে, ভুল করে বিমানটি ভূপাতিত করা হয় এবং এ ঘটনায় জড়িত বেশ কয়েকজনকে আটকের কথাও জানায় দেশটি। প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, তার দেশের তদন্ত পর্যবেক্ষণ করবে একটি 'বিশেষ আদালত'। এক ভাষণে তিনি বলেন, "এটি নিয়মিত এবং সাধারণ কোন ঘটনা হবে না। পুরো বিশ্ব এই আদালতের উপর নজর রাখবে।" মিস্টার রুহানি জোর দিয়ে বলেন যে, 'মর্মান্তিক ঘটনা'র জন্য কোন একজন ব্যক্তিকে দোষারোপ করা উচিত নয়। বিমান ভূপাতিত করার ঘটনাকে অমার্জনীয় ভুল বলে উল্লেখ করেছেন মিস্টার রূহানি "এর পেছনে শুধু একজন ব্যক্তি ছিলেন না যিনি ট্রিগার চেপেছেন, বরং অন্য যারা দায়িত্বে ছিলেন তারাও দায়ী," তিনি বলেন। ইরান প্রাথমিকভাবে অস্বীকার করেছিল যে বিমানটি একটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ভূপাতিত হয়েছে, কিন্তু পরে স্বীকার করে নেয় যে যাত্রীবাহী জেটটি তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার শিকার হয়েছে। ভিডিওটি যখন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, তখন বিশ্লেষকরা বলেন যে, এটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতের শিকার হয়েছে। কাকে গ্রেফতার করা হয়েছে? ইরানের গণমাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে বলছে যে, ইরানের এলিট রেভল্যুশনারি গার্ড, গত সপ্তাহে বিমানে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতের একটি ভিডিও পোস্ট করেছে এমন একজন ব্যক্তিকে হেফাজতে নিয়েছে। কিন্তু লন্ডনভিত্তিক ইরানের একজন সাংবাদিক যিনি প্রাথমিকভাবে ভিডিওটি পোস্ট করেছিলেন, তিনি জানিয়েছেন যে, তার সূত্র নিরাপদে রয়েছে এবং ইরানী কর্তৃপক্ষ ভুল ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। এর আগে মঙ্গলবার, ইরানের বিচারবিভাগের মুখপাত্র গোলাম হোসেইন এসমাইলি বলেন, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। "অবৈধভাবে সভা-সমাবেশ করার" অভিযোগে ৩০ জনকে গ্রেফতার কর��� হয়েছে- সম্প্রতি হওয়া সরকারবিরোধী বিক্ষোভের স্পষ্ট উল্লেখ এটি। এদিকে, নিউইয়র্ক টাইমস বলেছে, নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় যে, ২০ সেকেন্ডের ব্যবধানে বিমানটিকে লক্ষ্য করে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। সংবাদপত্রটি বলে যে, এর থেকেই বোঝা যায় যে কেন বিমানের ট্রান্সপন্ডার কাজ করছিল না, কারণ প্রথম ক্ষেপণাস্ত্রটির মাধ্যমে এটি অচল করে দেয়া হয়েছিল। অন্যান্য দেশ কী বলছে? যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বিবিসিকে মঙ্গলবার বলেন, বিমান বিধ্বস্ত করে 'ভয়ানক ভুল' করার কথা যে ইরান স্বীকার করেছে তাতে তিনি 'খুশি' হয়েছেন। "এটা ভাল যে তারা ক্ষমা চেয়েছে। এখন সবচেয়ে বড় যে বিষয় তা হচ্ছে ওই অঞ্চলে উত্তেজনা শান্ত হোক," তিনি বলেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইরানের পরবর্তী পদক্ষেপ হওয়া উচিত ফ্লাইট পিএস৭৫২ এর নিহত আরোহী এবং ক্রুদের "মরদেহগুলোকে সম্মানের সাথে" হস্তান্তর করা। মিস্টার জনসন বলেন যে, ইরানের পরবর্তী পদক্ষেপ হওয়া উচিত ফ্লাইট পিএস-৭৫২ এর নিহত আরোহী এবং ক্রুদের "মরদেহগুলোকে সম্মানের সাথে" হস্তান্তর করা, যার মধ্যে তিন জন ব্রিটিশ নাগরিকও রয়েছেন। আরো পড়ুন: ইরান হামলা: সঙ্কটে কে জিতলো কে হারলো ইরানের কাছ থেকে জবাব আনার প্রতিশ্রুতি দিলেন ট্রুডো সোলেইমানি হত্যাকাণ্ড কেন আইএস-এর জন্য সুখবর যে কারণে ইরান-আমেরিকা সংকটের সমাধান নেই ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভাদিম প্রিস্তাইকো সোমবার বলেছিলেন, এ ঘটনার আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা করতে বিমানে থাকা নিহত নাগরিকদের ৫ দেশ যথা- কানাডা, ইউক্রেন, আফগানিস্তান, সুইডেন এবং অন্য আরেকটি দেশ বৃহস্পতিবার লন্ডনে সাক্ষাৎ করবে। তিনি বলেন, "দুঃখ ভারাক্রান্ত দেশগুলোর" ঠিক করা উচিত যে তারা একক এবং যৌথভাবে কী কী পদক্ষেপ নেবে যাতে এ ঘটনায় জড়িতদের ন্যায়বিচারের আওতায় আনা যায় এবং স্বজনহারা পরিবারগুলোকে কিভাবে ক্ষতিপূরণ দেয়া যায়।" কানাডার পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ডের প্রধান ক্যাথি ফক্স বলেছেন যে, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োজনের বাইরে গিয়েও বিমান ভূপাতিতের তদন্তে আরো বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে দেশটি। এই ঘটনায় কানাডার ৫৭ জন নাগরিক নিহত হয়েছে। ইরান বলেছে, ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমানটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিধ্বস্ত হওয়ার ভিডিও যে ব্যক্তি ধারণ করেছে তাকে গ্রেফতার করা হয���েছে। +text: খালেদা জিয়া বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে এই দলটি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কথা বলবে, তবে তার চিকিৎসার বিষয়টিই প্রাধান্য পাবে। এর আগে গত রোববার মি. আলমগীর অভিযোগ করেন যে খালেদা জিয়া তাকে বলেছেন যে তিনি কারাগারে যথাযথ চিকিৎসা পাচ্ছেন না। দুর্নীতির দায়ে এক বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে থাকা বিএনপি নেতা খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করার বিষয়ে সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে গড়িমসি করছে বলে বিবিসি বাংলা'কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেন বিএনপির স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। মি. হোসেন বলেন, "অতীতেও তিনি (খালেদা জিয়া) বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন এবং বর্তমানে সেই রোগগুলো আরো খারাপ অবস্থা ধারণ করেছে।" বিনেপির দাবি, খালেদা জিয়াকে অনতিবিলম্বে জামিনে মুক্তি দেয়া হোক যাতে তিনি পছন্দমতো হাসপাতালে তার চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ পান। আর জামিন না দেয়া হলে সরকারি ববস্থাপনায় ঢাকাতেই তার পছন্দমতো বিশেষায়িত হাসপাতালে যেন তার চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয় - এমনটাই বলা হচ্ছে দলের পক্ষ থেকে। মি. মোশাররফ হোসেন বলেন, "আদালতের নির্দেশে যে মেডিক্যাল টিমটি গঠন করা হয়েছে তারা খালেদা জিয়ার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে সুপারিশ করেছে যেন তাকে বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।" "কিন্তু সরকার সেই চিকিৎসা শুরু করছে না, গড়িমসি করছে।" সেজন্যই তারা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে স্বাক্ষাৎ করতে চেয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তার দায় সরকারকে নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন মি. মোশাররফ হোসেন। আপাতত বিএনপির মূল দাবি: খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বাংলাদেশের ভেতরেই বিশেষায়িত হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে বিএনপি বুধবার ঢাকায় এক মানববন্ধনের কর্মসূচিও দিয়েছে। আরো পড়তে পারেন: নারী পুরুষ সমান অধিকার ভোগ করে যেসব দেশে কাদেরকে দেখে চিকিৎসক দেবী শেঠি কী বলেছেন? হার্ট অ্যাটাক: যে বিষয়গুলো কখনো উপেক্ষা করবেন না বাংলাদেশে দুর্নীতির মামলায় কারাগারে থাকা বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয় নিয়ে কথা বলতে আজ (মঙ্গলবার) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সাথে দেখা করবে বিএনপির নেতাদের একটি দল। +text: পাখির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায়, এখন পরিস্থিতি এমন যে, সেটি বড় ধরণের সংকট তৈরি করেছে। ইউসুফ ফেনাইনোস জানিয়েছেন, পাখির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায়, এখন পরিস্থিতি এমন যে, সেটি বড় ধরণের সংকট তৈরি করেছে। প্রায় এক বছর আগে রাজধানীর আবর্জনা একটি স্থানে ফেলার জন্য ঐ কেন্দ্রটি তৈরি করা হয়েছিল। মঙ্গলবার মিডিল ইষ্ট এয়ারলাইন্সের একটি বিমান রানওয়েতে অবতরণের আগে বিশাল এক ঝাঁক পাখির বাঁধার সম্মুখীন হয়। ২০১৬ সালের মার্চে কোস্টা ব্রাভা নামের আবর্জনা ফেলার স্থানটি নির্মাণ করা হয়, অস্থায়ী একটা সমাধান হিসেবে। কিন্তু ঐ বছরের আগস্টে পাইলটদের ইউনিয়ন সর্তক করে দিয়ে বলে এতে করে বিমানের ইঞ্জিনে পাখি ঢুকে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। পরিবহন মন্ত্রী। ইউসুফ ফেনাইনোস বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে এখন প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করবেন। তিনি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন "আজ আমরা একটা জরুরি অবস্থার মুখোমুখি। পাখির কারণে বিমান চলাচলে বিপদজনক কিছু হতে পারে সেটা আমরা সনাক্ত করতে পেরেছি। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ, এখন পর্যন্ত কোন প্রকৃত দুর্ঘটনা ঘটেনি"। লেবাননের রাজধানী বৈরুতের আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের কাছে একটি আবর্জনা ফেলার স্থানে বহুসংখ্যক পাখির আগমনের কারণে বিমান চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন, দেশটির পরিবহন মন্ত্রী। +text: নিহত রায়হান আহমেদ এসময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেয়র আশ্বাস দেন যে, এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। তবে রায়হানের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে শিগগিরই তদন্তে কোন অগ্রগতি না হলে তারা পুনরায় অনশন শুরু করবেন। আজ বেলা ১১টা থেকে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হওয়া রায়হান আহমদের মা সালমা বেগম, পরিবারের কয়েকজন সদস্যদের নিয়ে আমরণ অনশনে বসেছিলেন। এর আগে রায়হানকে হত্যা করা হয়েছে এমন দাবি তুলে আকবর হোসেনসহ ঘটনার সাথে জড়িত সকল আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন তিনি। এই সময় পেরিয়ে যাওয়ায় মাথায় প্রতীকী কাফনের কাপড় বেধে এবং ব্যানার তিনি অনশন শুরু করেন। এসময় তার সঙ্গে যোগ দেন সিলেট হকার্স মার্কেটের ব্যবসায়ীসহ আখালিয়া এলাকার বাসিন্দারা। অনশনের একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন সালমা বেগম। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে রায়হানের মামা মেহরাজ আহমেদ রুহেল বিবিসি বাংলাকে বলেন যে, মেয়রের আশ্বাসে তারা অনশন স্থগিত করেছেন ঠিকই তবে তাদের আন্দোলন চলবে। এদিকে এ ঘটনায় গ্রেফতার দুই আসামীর মধ্যে একজন টিটু চন্দ্র দাসের ৫ দিনের রিমান্ড শেষে রোববার আরও তিনদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতার অপর আসামী হারুনুর রশিদকে শনিবার ৫ দিনের রিমাণ্ডে নেয়া হয়। ঘটনার মূল অভিযুক্ত আকবর হোসেনকে ধরতে প্রচেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সিলেট বিভাগ ও মেট্রোপলিটন পিবিআইয়ের এসএসপি মোহাম্মদ খালেদুজ্জামান। অভিযুক্ত আকবর হোসেন ১২ অক্টোবর থেকেই পলাতক থাকায় তিনি যাতে বিদেশে পালাতে না পারেন সেজন্য সব ইমিগ্রেশনকে চিঠি দিয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এদিকে পুলিশের তদন্ত কমিটি রায়হানকে ফাঁড়িতে এনে নির্যাতনের প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে বলে জানা গেছে। এরইমধ্যে পুলিশের তদন্ত কমিটির সুপারিশে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি থেকে আকবরসহ ৭ জনকে বরখাস্ত ও প্রত্যাহার করা হয়। আরো পড়তে পারেন: পুলিশ হেফাজতে নিহত রায়হানের পরিবারের ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম হেফাজতে নির্যাতন: সে রাতে কেন আটক হয়েছিলেন রায়হান? অনশনে বসেছেন পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়া রায়হানের মা সহ তার আত্মীয় ও এলাকাবাসী কী ঘটেছিল রায়হানের সাথে? গত ১০ই অক্টোবর সিলেটের কাষ্টঘর এলাকা থেকে রায়হান আহমেদকে আটক করে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়। এরপর ভোররাতের দিকে অপরিচিত নম্বর থেকে রায়হান তার মামাতো ভাইকে ফোন করে টাকা নিয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে আসতে বলেন। সকালে রায়হানের বাবা ফাঁড়িতে গেলে সেখান থেকে তাঁকে হাসপাতালে যেতে বলা হয়। হাসপাতালে গিয়ে রায়হানের মৃত্যুর খবর জানতে পারেন তিনি। ওই রাতেই নিহতের স্ত্রী পুলিশকে অভিযুক্ত করে সিলেটের কোতোয়ালি থানায় হেফাজতে মৃত্যু আইনে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এর পর থেকে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন শুরু করে সাধারণ মানুষ। ১৫ দিনের মধ্যেও আইনের মানুষেরা আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের কেন গ্রেফতার করতে পারছে না। এবং প্রধান অভিযুক্ত আকবর হোসেন জবানবন্দি দেয়ার একদিন পর কিভাবে পালিয়ে গেল সেটা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে আসছে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। ঐ ঘটনার পর একদফা ময়নাতদন্ত শেষে রায়হানকে কবর দিয়ে দেয়া হলেও পরে কবর থেকে তুলে লাশ দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তে তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যাওয়ার কথা জানায় মামলার তদন্তকারী সংস্থা। যদিও, রায়হান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ শুরুতে দাবি করেছিল যে ছিনতাইয়ের অভিযোগে এলাকাবাসী তাকে গণপিটুনি দিয়ে আহত করেছে। পরে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। কিন্তু সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে কোন গণপিটুনির আলামত পাওয়া না যাওয়ায় ঘটনার মোড় ঘুরে যায়। সিলেট নগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে আমরণ অনশনে বসা রায়হান আহমদের মা-কে শরবত খাইয়ে অনশন ভাঙিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশেনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। +text: শুকনো সাপ চীনের ঐতিহ্যগত ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত হয় বুনো প্রাণীর অবৈধ কেনাবেচার জন্যও ওই বাজারের পরিচিতি রয়েছে, যেখানে সাপ, র‍্যাকুন (উত্তর আমেরিকার একটি প্রাণী), বা সজারুর মতো প্রাণী খাঁচায় রেখে খাবার অথবা ঔষধ হিসাবে বিক্রি করা হতো। তবে পুরো প্রদেশটি কোয়ারেন্টিন করে ফেলার পর সেই বাজার বন্ধ হয়ে যায়। বিশ্বের মধ্যে চীনেই সবরকম বৈধ ও অবৈধ বুনো প্রাণীর সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে। সাময়িক নিষেধাজ্ঞা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, করোনাভাইরাসের প্রাথমিক উৎস বাদুড় থেকে হয়েছে বলে তারা ধারণা করছেন। কিন্তু তাদের ধারণা, ভাইরাসটি অন্য আরেকটি প্রাণীর শরীরে প্রথমে স্থানান্তরিত হয়েছে, যদিও সেই প্রাণীটি এখনো শনাক্ত করা যায়নি। তারপরে সেটি মানুষের শরীরে এসেছে। ঐতিহ্যগতভাবে বুনো পণ্যের বিশাল চাহিদা রয়েছে চীনে। কিছু প্রাণী খাওয়া হয় সেগুলো সুস্বাদু বলে, আবার কিছু প্রাণী খাওয়া হয় সেগুলোর প্রাচীন ঔষধি গুণ রয়েছে বিবেচনা করে। চীনের অনেক প্রদেশের রেস্তোরাঁয় বাদুড়ের সুপ (যেখানে পুরো একটি বাদুড় দেয়া হয়), বাঘের অণ্ডকোষ দিয়ে অথবা গন্ধগোকুলের (পাম সিভেট) শরীরের অংশ দিয়ে তৈরি করা সুপ বিক্রি করা হয়। অনেক রেস্তোরাঁয় খাদ্য তালিকায় গোখরা সাপের ভাজা, অল্প আঁচে রান্না করা ভালুকের পা, বাঘের মেরুদণ্ড দিয়ে তৈরি করা ওয়াইনও থাকে। আরো পড়ুন: ইতিহাসের সাক্ষী: কিভাবে সার্স রোগের মোকাবিলা করেছিল হংকং ভাইরাস রোধে অন্য দেশের অভিজ্ঞতা থেকে বাংলাদেশ কী নিতে পারে করোনাভাইরাস: কীভাবে শ���াক্ত করছে বাংলাদেশ? করোনাভাইরাস গাইড: আপনার প্রশ্নের উত্তর বেশ কয়েকটি পাখির প্রজাতি বিলুপ্তির মুখে ঠেলে দেয়ার জন্য চীনের বন্যপ্রাণীর ব্যবসাকে দায়ী করা হয়। অনেক নীরব এলাকার বুনোপ্রাণীর বাজারে ইঁদুর, বিড়াল, সাপ এবং পাখির অনেক প্রজাতি বিক্রি হয়, যার মধ্যে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা অনেক প্রাণীও রয়েছে। ''দ্যা নোশন অফ ইয়েওয়ি'' ( চীনা ভাষায় যার অর্থ বুনো স্বাদ) হচ্ছে চীন জুড়ে প্রচলিত একটি পারিবারিক পরিভাষা, যার মধ্যে সংস্কৃতিগতভাবে দুঃসাহসিক কাজ, সাহস, কৌতূহল ইত্যাদির মিশ্রণ রয়েছে,'' - বলে মন্তব্য করেছেন চীনে বুনো প্রাণীর বাণিজ্য নিয়ে অনুসন্ধানকারী আন্তর্জাতিক একটি সংস্থার একজন কর্মকর্তা। চীনের অনেক ঐতিহ্যগত ঔষধের প্রাথমিক উপকরণ হিসাবে বন্যপ্রাণী পণ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয় এই বিশ্বাসে যে, এর মধ্যে পুরুষত্বহীনতা, বাত এবং গেঁটেবাতের মতো বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা রয়েছে। বিলুপ্তির হুমকি প্যাঙ্গোলিনের (একধরণের স্তন্যপায়ী প্রাণী, যার শরীর খোলসে ঢাকা থাকে) অসম্ভব চাহিদার কারণে এর মধ্যেই এই প্রাণীটি চীন থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিশ্বের অন্যান্য অংশেও এই প্রাণীটি এখন সবচেয়ে বেশি পাচার হওয়া বুনো প্রাণী। চীনের ঐতিহ্যগত ঔষধে গণ্ডারের শিংয়ের ব্যাপক ব্যবহার আরেকটি উদাহরণ, যার ফলে এই প্রজাতিও এখন বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়েছে। এসব কিছুই এমন সময়ে ঘটছে যখন ধারণা করা হচ্ছে যে, মানব শরীরে সংক্রমণের ৭০ শতাংশই আসছে প্রাণী থেকে, বিশেষ করে বন্যপ্রাণী থেকে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে চীনের বন্যপ্রাণী বাণিজ্যের ওপর নতুন করে সবার চোখ পড়েছে, যার বিরুদ্ধে বিশ্বের সংরক্ষণ গ্রুপগুলো দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনা করে আসছে, কারণ এর ফলে অনেকগুলো প্রাণীর প্রজাতি হুমকির মুখে পড়েছে। সর্বশেষ প্রাদুর্ভাবের ফলে চীনের কর্তৃপক্ষ বন্যপ্রাণী বাণিজ্যের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, যাতে ভাইরাসটি আর ছড়িয়ে না পড়ে। তবে সংরক্ষণবাদীরা এই সুযোগ ব্যবহার করে স্থায়ী একটি নিষেধাজ্ঞার দাবি জানিয়েছেন। সার্স ভাইরাসের সংক্রমণ চীনের একটি বন্যপ্রাণীর বাজারের সিভেট ক্যাট থেকে হয়েছিল বলে জানা গেছে চীন কী শুনবে? করোনাভাইরাসের এই প্রাদুর্ভাবের ফলে অবৈধ বন্যপ্রাণীর বাণিজ্য বন্ধ আর জনস্বাস্থ্য রক্ষার প্রয়াসে ভূমিকা রাখতে পারে? বিশেষজ্���রা বলছেন, এটা চ্যালেঞ্জিং, কিন্তু একেবারে অসম্ভব নয়। সার্স ও মার্স ভাইরাসও বাদুড় থেকে সংক্রমিত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, সেগুলো মানব শরীরে এসেছিল ক্যাভেট ক্যাট আর উটের মাধ্যমে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের ডক্টর বেন এমবারেক বলছেন, ''বন্যপ্রাণীর অনেক প্রজাতি এবং তাদের আবাসস্থলের খুব কাছাকাছি চলে আসছি আমরা, যা আগে কখনো আসিনি।'' ''এ কারণে আমাদের অনেকগুলো নতুন ধরণের রোগ দেখা যাচ্ছে, যার অনেকগুলোয় এমন সব ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং পরজীবীর সংস্পর্শে হচ্ছে, যা আগে কখনো হয়নি।'' সাম্প্রতিক একটি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, পাঁচ হাজারের বেশি প্রজাতির স্তন্যপায়ী, পাখি, সরীসৃপ এবং উভচর প্রজাতির প্রাণী বিশ্ব বাজারে বৈধ বা অবৈধভাবে কেনাবেচা হচ্ছে। বিশ্বে অবৈধ বুনো প্রাণীর বাজার প্রায় দুই হাজার কোটি ডলারের। মাদক ব্যবসা, মানব পাচার আর জাল ব্যবসার পরেই এই বন্যপ্রাণীর ব্যবসার অবস্থান। চীনে বন্যপ্রাণীর মাংস খাবার এবং ঔষধ হিসাবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় সতর্কতার আহবান ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচার (ডব্লিউডব্লিউএফ) একটি বিবৃতিতে বলেছে যে, ''এই স্বাস্থ্য সংকটের বিষয়টিকে বিলুপ্তপ্রায় পশু ও তাদের শরীরের অংশের অবিরাম ব্যবহার বন্ধের একটি সতর্কবার্তা হিসাবে দেখতে হবে, যাতে এগুলো খাবার বা ঔষধ হিসাবে আর ব্যবহার করা না হয়।'' তবে চীনের সরকার পরিষ্কার করে দিয়েছে যে, এই নিষেধাজ্ঞাটি সাময়িক। ''জাতীয় প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতি শেষ হয়েছে, এরকম ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত বন্যপ্রাণী সংগ্রহে রাখা, বহন বা বিক্রি করা নিষিদ্ধ থাকবে।'' চীনের সরকারি ঘোষণায় বলা হয়েছে। ২০০২ সালে সার্স ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর একই রকম ঘোষণা দিয়েছিল বেইজিং। তবে চীনের সংরক্ষণবাদীরা বলছেন, সেবার ওই ঘোষণার কয়েক মাস পরে কর্তৃপক্ষ শিথিলতা দেখাতে শুরু করে এবং চীনে বন্যপ্রাণীর বাজার আবার চালু হয়ে যায়। যাচাই-বাছাইয়ে কড়াকড়ি গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রাকৃতিক ও জৈব সম্পদ নিয়ে একটি বৈশ্বিক সভার আয়োজন করেছিল বেইজিং, যেটি কনভেনশন অন বায়োলজিক্যাল ডাইভারসিটি নামে পরিচিত। আন্তঃসরকার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে দশ লাখ প্রজাতি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে- যা মানব জাতির ইতিহাসে সর্বোচ্চ। চীনে বন্যপ্রাণীর ব্যাপক চাহিদার কারণে প্রতিবেশি দেশগুলোতে এ ধরণে বাজার তৈরি হচ্ছে ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পরে চীনের অনিয়ন্ত্রিত বন্যপ্রাণীর বাজারের বিষয়টি অস্বীকার করা হয় চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলোয়। ''এই সুযোগটিকে আমরা বন্যপ্রাণী রাখা, প্রজনন বা ব্যবহার বন্ধে একটি স্থায়ী পদক্ষেপ হিসাবে দেখতে চাই, যাতে এগুলো খাবার বা ঔষধ হিসাবে আর ব্যবহার করা না হয়,'' - বলছেন ডেবি ব্যাঙ্কস, লন্ডন ভিত্তিক একটি পরিবেশ তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তা, যিনি চীনের বন্যপ্রাণীর ব্যবহার নিয়ে বড় ধরণের অনুসন্ধান চালিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লুর মতো রোগের প্রাদুর্ভাবে বিশ্বজুড়ে পাখির অনেক প্রজাতি রক্ষা পেয়েছিল। চীনে হাতির দাঁতের আমদানি নিষিদ্ধ হওয়ার পর বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা হাতিও রক্ষা পেয়েছে। তবে তারা এটাও গুরুত্ব দিয়ে বলছেন, বন্যপ্রাণীর ব্যবহার বন্ধের পদক্ষেপ সারা বিশ্ব জুড়েই নিতে হবে - শুধুমাত্র চীন নিলেই হবে না। ''কিন্তু যেহেতু চীনে যেহেতু বন্যপ্রাণীর সবচেয়ে বড় বাজার রয়েছে, সে কারণে তারা এক্ষেত্রে অগ্রগামী ভূমিকা রাখতে পারে।'' বিজ্ঞানীদের ধারণা, চীনের উহান শহরের সামুদ্রিক খাবারের বাজার থেকেই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হয়েছে, যাতে এ পর্যন্ত সারা বিশ্বে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। +text: অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৩ কোটি ডোজ টিকা কিনেছে বাংলাদেশ ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউট থেকে কিনে আনা তিন কোটি ডোজের দ্বিতীয় চালান এটি। হাতে থাকা টিকার পুরোটাই প্রথম ডোজে যদিও প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ আসার কথা ছিল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা,জানিয়েছেন, "টিকার সরবরাহ একটি চলমান প্রক্রিয়া। দ্বিতীয় চালানে ২০ লাখ আসবে সেটা বেশ কিছুদিন আগেই জানানো হয়েছে। টিকার যথেষ্ট সরবরাহ নিশ্চিত রয়েছে। তাই প্রথম দফায় ৩৫ লাখ টিকা দেবার যে চিন্তা ছিল তা পরিবর্তন করে এখন সংরক্ষণে থাকা পুরোটাই প্রথম ডোজ হিসেবে দেবার পরিকল্পনা করা হয়েছে। টিকার চালান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পর আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।" তবে টিকার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে কিনা - সেই আশঙ্কাতেও দ্রুত হাতে থাকা সব ডোজ সরকার শেষ করতে চায়, মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে এমন ধার���া পাওয়া গেছে। এপ্রিল মাস থেকে দ্বিতীয় ডোজ এপ্রিল মাস থেকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া শুরু হবে বলে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে। আর দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শেষ হওয়ার আগেই একই সাথে আরও নতুন নিবন্ধনকারীকে প্রথম ডোজ দেয়া শুরু করতে চায় সরকার। শীঘ্রই প্রথম সারির কর্মী হিসেবে শিক্ষকদের টিকা দেয়া শুরু করার ঘোষণা এসেছে। অন্যদিকে সংরক্ষণের সুবিধার জন্য বাংলাদেশ টিকার চালান একটু বিরতি দিয়ে আসার পক্ষপাতী বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ কোভিশিল্ড টিকা প্রথম দেয়া শুরু হয়। রাতেই আসছে টিকার দ্বিতীয় চালান, পাওয়া যাবে আরো প্রায় ৭ কোটি ডোজ আগামী কয়েক মাসে যত ডোজ আসার সম্ভাবনা গত ২৫ জানুয়ারি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি এবং ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউটের উৎপাদিত ৫০ লাখ ডোজের প্রথম চালান বাংলাদেশে এসে পৌঁছায়। তবে এর আগেই ভারত সরকারের উপহার দেয়া ২০ লাখ ডোজ ঢাকায় এসেছিল। ২৭ জানুয়ারি কোভিশিল্ড টিকা প্রথম দেয়া হয় পর্যবেক্ষণের জন্য। আর এ মাসের ৭ তারিখ থেকে দেশব্যাপী গণটিকা কর্মসূচী শুরু হয়। সম্পর্কিত খবর: করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন নিয়ে আপনার যত প্রশ্ন ও তার উত্তর বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম টিকা নিলেন যে নার্স করোনা ভাইরাস: কেন নিম্নবিত্ত মানুষ টিকা নিতে আগ্রহী না এর পর থেকে গড়ে প্রতিদিন দুই লাখ ডোজের মত টিকা দেয়া হচ্ছে বলে কর্মকর্তারা বলছেন। আজ দুপুর পর্যন্ত নিবন্ধন হয়েছে ৩৫ লাখের বেশি। বাংলাদেশে শুরুর দিকে টিকার ব্যাপারে মানুষজনের অনাগ্রহ থাকলেও এখন আগ্রহ অনেকটাই বেড়েছে। বাংলাদেশ কি পর্যাপ্ত টিকা পাবে? তবে মাত্র গতকালই সিরাম ইন্সটিটিউটের পক্ষ থেকে টিকার জন্য অপেক্ষমান বিশ্ববাসীকে ধৈর্য ধরার আহবান জানানো হয়েছে, কেননা আগে ভারতের আভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করা হবে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সময়মত পর্যাপ্ত টিকা সংগ্রহ করতে কতটা সক্ষম হবে? প্রথম ডোজ দেবার পর দ্বিতীয় ডোজের জন্য যথেষ্ট টিকা হাতে থাকবে কিনা - এমন প্রশ্নগুলো উঠতে শুরু করেছে। জনসংখ্যার অনুপাতে টিকা আরও বেশি দরকার। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এস এম আলমগীর ধারণা দিয়েছেন কী পরিমাণে টিকা আগামী কয়েক মাসে বাংলাদেশে এসে পৌঁছাতে পারে। "সিরাম ইন্সটিটিউট থেকে কেনা টিকা সহ আমা��ের পাইপলাইনে দশ কোটির যা পাঁচ কোটি মানুষকে দুই ডোজে দেয়া হবে" - বলছেন তিনি। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা বণ্টনের জন্য গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাক্সিন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে তৈরি হয়েছে কোভ্যাক্স। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে বাংলাদেশের জনসংখ্যার ২৭ শতাংশের জন্য টিকা তারা সরবরাহ করবে। মি.আলমগীর বলছেন, "ছয় কোটি আশি লাখ টিকা বাংলাদেশকে দেবে কোভ্যাক্স।" এর প্রথম চালান এ মাসের শেষে আসতে শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে। 'বাংলাদেশের টিকা কর্মসূচী অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে' জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মাহফুজা রিফাত মনে করছেন, বাংলাদেশ টিকা দেবার ক্ষেত্রে অনেক দেশের থেকে এগিয়ে থাকলেও বারবার সংখ্যা ও পরিকল্পনা পরিবর্তন না হলে ভাল হত। তিনি বলছেন, "বিশ্বব্যাপী টিকার জন্য অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সবকিছু অতিক্রম করেও যেভাবে আমাদের টিকা কর্মসূচী চলছে, আমি বলবো সেটা আশানুরূপ। কিন্তু এখনো পর্যন্ত যে পরিমাণ টিকা পাওয়া যাবে বলে বলা হচ্ছে তা বাংলাদেশে জনসংখ্যার জন্য যথেষ্ট নয়।" "তাই সামনে আমাদের এই সেবার মান ও গতি ধরে রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে যাতে কোন চ্যালেঞ্জের মধ্যে আমরা না যাই।" টিকা নিতে আগ্রহী হলে যেসব বিষয় আপনার জানা থাকা জরুরি আজ রাত সাড়ে এগারোটার দিকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী কোভিশিল্ড টিকার ২০ লাখ ডোজ ঢাকায় এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। +text: সৈকতে মৃত তিমি বেলা সাড়ে বারটার দিকে জোয়ারের পানি নামতে শুরু করলে তিমিটি স্থানীয় লোকজনের চোখে পড়ে। হিমছড়ি ও দরিয়ানগর নামক এলাকার মাঝামাঝি একটি জায়গায় তিমিটিকে পাওয়া গেছে বলে বলছেন স্থানীয় সাংবাদিক তারিকুর রহমান। মিস্টার রহমান বলছেন ঠিক কখন কিভাবে ভেসে এসেছে তিমিটি তা বোঝা যাচ্ছে না, তবে কয়েকদিন আগেই যে মারা গেছে তা নিশ্চিত - কারণ তিমিটি থেকে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিন আল পারভেজও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মিস্টার পারভেজ বিবিসি বাংলাকে বলেন, "প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তারা তিমিটির মৃত্যুর কারণসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। এর পর তাদের পরামর্শ নিয়ে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব"। তিনি বলেন সাধারণভাবে মনে হচ্ছে বেশ কয়েকদিন আগেই মারা গেছে এটি এবং সে কারণে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় খুব দ্রুতই এটিকে অপসারণ করতে হবে। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: ১৭ দিন পর মৃত শাবককে বিদায় জানালো তিমি প্রাচীন ঢাকাই মসলিন, কীভাবে বোনা হতো কেউ জানে না নতুন উপসর্গ নিয়ে যেসব চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে আফ্রিকান ভ্যারিয়ান্ট বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার রামু এলাকায় সমুদ্র সৈকতে পড়ে আছে বিশালাকৃতির একটি মৃত তিমি। +text: ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তবে অনেকে আবার মনে করেন গোটা প্রক্রিয়াটা সংবিধান মেনেই সম্পন্ন হয়েছে। যদিও এ নিয়ে এখনও কোনও মামলা হয় নি, তবে সরকারও জানে যে তাদের এতবড় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনও ব্যক্তি বা সংগঠন আদালতে যেতেই পারে। সংবিধান বিশেষজ্ঞ এজি নুরানি বিবিসিকে বলছিলেন, "এটা সম্পূর্ণভাবে অসাংবিধানিক সিদ্ধান্ত। ৩৭০ ধারা আইনী দিকটা পরিষ্কার। কেউ এটার বিলোপ ঘটাতে পারে না।" "সে অধিকার রয়েছে একমাত্র জম্মু-কাশ্মীরের সংবিধান সভার। কিন্তু সে তো ১৯৫৬ সালেই ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। এতদিন পরে নরেন্দ্র মোদীর সরকার কীভাবে ওই ধারা প্রত্যাহার করতে পারে!" তার কথায়, সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিতভাবেই আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট কী সিদ্ধান্ত নেবে - সেটা তারাই ঠিক করবে। আরো পড়তে পারেন: মুসলিম-প্রধান কাশ্মীরের চরিত্র বদলানোই মূল লক্ষ্য? কাশ্মীরের জন্য বিশেষ আইন কেন বিতর্কিত? যেভাবে বদলে যাবে ভারতের অধীন কাশ্মীর ভারত শাসিত কাশ্মীরের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গত তিন দশক ধরে বিদ্রোহ হয়ে আসছে। সুপ্রিমকোর্ট কি অনু্চ্ছেদ ৩৭০ বিলোপের সিদ্ধান্ত খারিজ করতে পারে? আরেক সংবিধান বিশেষজ্ঞ সুভাষ কাশ্যপ বিবিসিকে জানিয়েছেন, "সুপ্রিম কোর্টে তো যে কোনও বিষয় নিয়েই আবেদন জানানো যেতে পারে। তবে সেটা আদালতের ওপরেই নির্ভর করছে যে তারা মামলাটি শুনবে নাকি খারিজ করে দেবে।" "প্রতিটা ব্যাপারেই আইনী তর্ক-বিতর্ক হতে পারে। আর যিনি চ্যালেঞ্জ জানাতে চান, তিনি ঠিকই কোনও না কোনও রাস্তা খুঁজে নেবেন।" সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদের বিলোপের ব্যাপারে মি. কাশ্যপের মন্তব্য, "এই ব্যাপারে রাজনৈতিক মতভেদ থাকতেই পারে, কিন্তু আমার মনে হচ্ছে গোটা প্রক্রিয়াটা সংবিধান মেনেই হয়েছে।" 'পুরো প্রক্রিয়াটি সংবিধান মেনে হয়েছে' কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া ভারতীয় সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৭০ বিলোপের সিদ্ধান্তকে অনে��ে অসাংবিধানিক বলে দাবি করলেও অনেক বিশেষজ্ঞের দাবি - পুরো প্রক্রিয়াটিই সংবিধানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে পরিচালিত হয়েছে। ভারতের প্রাক্তন অতিরিক্তি সলিসিটর জেনারেল এবং সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবি বিকাশ সিংও সুভাষ কাশ্যপের মত মনে করেন, ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার নিয়ে আদালতে আবেদন জানানো সম্ভব নয়। তার কথায়, " ৩৭০ আর ৩৫এ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার, সেই পুরো প্রক্রিয়াটাই সংবিধান মেনেই হয়েছে। আমার মনে হয় না এটাকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে।" অনুচ্ছেদ ৩৭০ বিলোপ হওয়া সাংবিধানিকভাবে কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মি. সিংয়ের ব্যাখ্যা, "ওই দুটি অনুচ্ছেদেই অস্থায়ী ব্যবস্থার বিষয়ে বলা ছিল। সরকার সেই অস্থায়ী ধারা দুটি সরিয়ে দিয়েছে।" "এখন জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের নাগরিকদের সেই সব মৌলিক অধিকার থাকবে যা ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী অন্য সব রাজ্যের নাগরিকদের রয়েছে।" ভারতের আরেক প্রাক্তন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কে সি কৌশিক অন্যদিকে মনে করেন যে ,৩৭০অনুচ্ছেদ বিলোপের ফলে যারা প্রভাবিত হয়েছেন বলে মনে করছেন, তাদের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে আদালতে যাওয়ার। তিনি বলছিলেন, "এটা খুবই স্বাভাবিক, যিনি বা যারা এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রভাবিত হয়েছেন, তারা আদালতে যাবেনই। কোন ব্যক্তি বা সংগঠন কোর্টে আবেদন করবেন, সেটা জানি না, কিন্তু কেউ না কেউ তো যাবেনই আদালতে।" "ভারতের সংবিধান সেই অধিকার সবাইকেই দিয়েছে। কোনও নির্দেশের ফলে কেউ যদি নিজেকে প্রতারিত হয়েছেন মনে করেন, তাহলে আদালতে যেতেই পারেন তিনি।" মি. কৌশিক মনে করেন যে, সরকার হয়তো সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেই মনে করছে, কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত কীভাবে কার্যকর করবে, তার দিকে নজর দেওয়া উচিত ছিল। ভারত শাসিত কাশ্মীরকে দেশটির সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ যে বিশেষ মর্যাদা দিত, তার বিলোপের সিদ্ধান্ত সংবিধানসম্মত কি-না - তা নিয়ে আদালতে চ্যালেঞ্জ জানানো যেতে পারে বলে মনে করছেন ভারতের সংবিধান বিশেষজ্ঞদের অনেকেই। +text: রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ মি. ট্রাম্পের আপত্তি সত্ত্বেও কংগ্রেসে পাশ হওয়া এই বিলটিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে অনুমতি দানের স্বাক্ষর করতে গিয়ে, বিলটিকে তিনি 'ফ্লড' বা 'ত্রুটিযুক্ত বিল' বলে আখ্যায়িত করেছেন। রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, নতুন এই বিলের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র আসলে 'পূর্ণমাত্রায় বাণিজ্যকেন্দ্রিক যুদ্ধ' শুরুর প্ররোচনা দিচ্ছে। মি: মেদভেদেভ বলেছেন, "এই যে বিলটিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সই করলেন, এতেই স্পষ্ট হলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের গুরুত্ব আসলে কতটা"। রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ভাষায়, কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে পুরোপুরি অপদস্থ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস গত সপ্তাহে প্রায় সর্বসম্মতভাবে রাশিয়ার ওপর নতুন করে অবরোধ আরোপের বিল পাশ করে। এই বিল সংসদের দুই কক্ষেই পাশ হওয়ায় নাখোশ ছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তাই অনেকেই মনে করছিলেন যে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিলটিতে স্বাক্ষর করার সময়ে শেষ মুহূর্তে কোনো একটা অজুহাতে মি: ট্রাম্প হয়তো তাতে স্বাক্ষর নাও করতে পারেন। কিন্তু সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে রুশ-অবরোধ বিলে অনিচ্ছা সত্ত্বেও স্বাক্ষর করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে নিজেকে আরো সমালোচিত করে তুলতে চাননি বলেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হয়তো এই বিলে স্বাক্ষর করেছেন বলেও মনে করছেন অনেকেই। ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার ভূমিকা ‌এবং ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাশিয়ার ওপর এই নতুন অবরোধ এলো। গত মাসেই ট্রাম্প-পুতিনের প্রথম বৈঠক হলো জার্মানিতে জি-৭ সম্মেলনে। এর পর দুই দেশই তাদের সম্পর্ক উন্নয়নে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞা বিল আবারো উত্তেজনার পারদই বাড়িয়ে দিল বলেও মনে করছে কেউ কেউ। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চান রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন করতে তবে, জাতিসংঘে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া বলেছেন, নিষেধাজ্ঞার পরেও তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করে যাবে। তিনি বলছেন, "আমি আজকাল সত্যিই এই ভেবে বিস্মিত হই যে, দুনিয়ায় এমন কোনো ইস্যু কি আছে যেটি নিয়ে আপনি রাশিয়াকে অভিযুক্ত করতে পারবেন না! কিন্তু আমরা খিটখিটে শিশুর মতন নই এবং চারিদিকে যা কিছু ঘটে তার সকল কিছু দিয়েই আমরা বিরক্ত বোধ করি না। আমাদের সহযোগীদের সাথে, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সাথেও, আমরা কাজ করতে উপায় খুঁজবো"। "আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে খুশী করতে চাই বা ওই বিলে কী আছে এইসবের জন্য নয়। বরং আন্তর্জাতিক সমাজের কল্যাণের নিমিত্তে, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র, আমরা একত্রে কাজ করবো এটা বোঝাতে যে, আমরাও সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব নিয়ে কাজ করতে পারি" বলেন রুশ রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া । মার্কিন নির্বাচনে রুশ-হস্তক্ষেপের যে অভিযোগ এনে এই অবরোধ দেয়া হলো, সেই অভিযোগ শুরু থেকেই নাকচ করে আসছে রাশিয়া। নতুন এই অবরোধ বিলের মাধ্যমে রাশিয়ার পাশাপাশি উত্তর কোরিয়া ও ইরানের বিরুদ্ধেও অবরোধ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের ওপর আরোপ করা এই নিষেধাজ্ঞাটিকে পরমাণু চুক্তির লংঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করেছে ইরান। নিষেধাজ্ঞার জবাবে ইরান বলেছে, এর মাধ্যমে অ্যমেরিকা পরমাণু চুক্তির লঙ্ঘন করেছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: রাশিয়ার ওপর নতুন করে অবরোধ আরোপের বিলে স্বাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। +text: আলেক্সেই নাভালনিকে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনেই গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে অভ্যর্থনা জানাতে মস্কো বিমানবন্দরে হাজার হাজার সমর্থক জড়ো হয়েছিলেন। কিন্তু বিমানবন্দরে নামার আগেই তাকে বহনকারী বিমানটির পথ পরিবর্তন করে নিয়ে যাওয়া হয় শেরেমেতেইয়েভো বিমানবন্দরে। সেখানে ইমিগ্রেশনে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায় ৪৪ বছর বয়সী এই আন্দোলনকারীকে। মি. নাভালনি তাকে হত্যাচেষ্টার জন্য রুশ কর্তৃপক্ষকে সবসময় দায়ী করে এলেও ক্রেমলিন বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে। যাইহোক, অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের তদন্তে নাভালনির দাবিই সত্য বলে প্রতীয়মান হয়েছে। তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে এমন বিষয়ে তাকে সাবধান করা হলেও তিনি বিমানে উঠেছিলেন। তিনি যে বিমানে করে মস্কো আসছিলেন সেটি ভর্তি ছিল সাংবাদিক। বিবিসির রাশিয়ান সার্ভিসের একজন সংবাদদাতাও ছিলেন। বিমানটি অবতরণের মাত্র কিছুক্ষণ আগে পাইলট ঘোষণা দেন যে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমানটির পথ পরিবর্তন করে শেরেমেতেইয়েভো নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাতে আসা সমর্থক সাথে কথা বলছেন স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনি। আটক হওয়ার কয়েক মিনিট আগে তিনি বলেন, "আমি কিছু ভয় পাই না।" বিমান থেকে নামার পর অপেক্ষমাণ বর্ডার গার্ডদের তিনি বলছিলেন, "আমার জন্য কি আপনারা অপেক্ষা করছেন।" এক ভিডিওতে দেখা গেছে তাকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার আগে স্ত্রী ইউলিয়াকে বিদায় জানাচ্ছেন তিনি। তাকে মস্কোতে একটি পুলিশ স্টেশনে আটক রাখা হয���েছে বলে জানা যাচ্ছে। এক বিবৃতিতে রাশিয়ার কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তিনি বারবার প্রবেশন ভঙ্গ করেছেন। সেজন্য তার বিরুদ্ধে ডিসেম্বর থেকে হুলিয়া জারি রয়েছে। গত বছর আগস্ট মাসে সাইবেরিয়া যাওয়ার পথে এক বিমানযাত্রার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচিত নাভালনি। পুতিনের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত আলেক্সেই নাভালনি। চিকিৎসার জন্য বিমান জরুরি অবতরণ করে তাকে জার্মানির হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন জার্মান সরকার জানায় তাকে নভিচক নামে স্নায়ু বিকল করার বিষাক্ত এক রাসায়নিক প্রয়োগ করা হয়েছে। মি. নাভালনি তাকে হত্যা চেষ্টার জন্য ভ্লাদিমির পুতিনকে দায়ী করে আসছেন। বিষপ্রয়োগে হত্যা চেষ্টা থেকে বেঁচে, লম্বা সময় জার্মানির হাসপাতালে কাটিয়ে সুস্থ হয়ে রাশিয়াতে ফিরেতেই গ্রেফতার করা হল আলেক্সেই নাভালনিকে। তার গ্রেফতার হওয়ার খবরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স ও ইতালির পক্ষ থেকে অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট জো বাইডেন যাকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেবেন বলে চূড়ান্ত করেছেন সেই জ্যাক সালিভান পুরো বিষয়টিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছেন। এর আগেও অনেকবার গ্রেফতার হয়েছেন আলেক্সেই নাভালনি। দীর্ঘদিন যাবৎ রাশিয়াতে সংস্কারের জন্য ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন মি. নাভালনি। এর আগে বারবার গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। ২০১৯ সালে তিনি ভুগেছেন অদ্ভুত এক অ্যালার্জির সমস্যায়। গত জুন মাসে ভ্লাদিমির পুতিনের আনা সাংবিধানিক সংস্কারের ভোটকে তিনি "অভ্যুত্থান" বলে বর্ণনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন ওই সংস্কার "সংবিধানের লঙ্ঘন"। ওই সংস্কারের ফলে মি. পুতিন আরও দুই মেয়াদ ক্ষমতায় থাকতে পারবেন। মি নাভালনি ভ্লাদিমির পুতিনের অধীনে প্রেসিডেন্ট ব্যবস্থাকে "রাশিয়ার রক্তকে চুষে খাওয়ার" সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। বিষপ্রয়োগে হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে যাওয়া পুতিন সরকারের কড়া সমালোচক আলেক্সেই নাভালনিকে আটক করেছে রাশিয়া। তিনি পাঁচ মাস জার্মানিতে কাটিয়ে মস্কো ফেরার সাথে সাথেই তাকে আটক করা হয়। +text: গত বছর ইরাকের হাবিজাহ'র কাছে আবিষ্কৃত একটি গণকবর জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার দফতর থেকে প্রকাশ করা এক রিপোর্টে বলা হয়, ��রাকের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে নিনেভেহ, কিরকুক, সালাহ আল-দীন, এবং আনবার প্রদেশগুলোয় এসব গণকবর পাওয়া গেছে। রিপোর্টে বলা হয়, এসব গণকবরে পাওয়া মৃতদেহের সংখ্যা ১২ হাজার পর্যন্ত হতে পারে। জাতিসংঘ বলছে, এসব গণকবরের ফরেনসিক পরীক্ষা করা দরকার, কারণ যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তা কতটা ব্যাপক তার প্রমাণ রয়েছে এসব গণকবরে। জেনেভা থেকে বিবিসির ইমোজিন ফুকস জানাচ্ছেন, এই গণকবরগুলো পাওয়া গেছে এমন এলাকায় যা একসময় ছিল ইসলামিক স্টেটের দখলে। মসুল শহরের বাইরের একটি গর্তে খুঁজে পাওয়া গেছে আট জনের দেহ। আর খাফসা শহরে একটি বিরাট একটা খাদে পাওয়া গেছে শত শত মানুষের দেহাবশেষ। অনেক মৃতদেহই সনাক্ত করা যায়নি। নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু, বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী থেকে শুরু করে ইরাকের সামরিক এবং পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাও আছে। জাতিসংঘের এর আগের আনুমানিক হিসেবে বলা হয়েছিল, ইরাকে ইসলামিক স্টেট জঙ্গী গোষ্ঠীর হাতে অন্তত ৩৩ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। ইরাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া মসুল শহর - যা ২০১৭ সালের জুলাই পর্যন্ত আইএসের দখলে ছিল ২০১৪ সাল থেকে তিন বছর ধরে এই গোষ্ঠীটি সিরিয়া এবং ইরাকের যে বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করেছিল, সেখানে তারা বহু মানুষকে প্রকাশ্যে হত্যা করেছে। এর মধ্যে তাদের মতাদর্শের বিরোধী লোক থেকে শুরু করে, সরকারের সঙ্গে সম্পর্কিত লোকজন, ইয়াজিদি এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ, সবাইকে টার্গেট করা হয়েছিল। শত শত ইরাকি পরিবার এখনো তাদের নিখোঁজ স্বজনদের খুঁজে বেড়াচ্ছে। জাতিসংঘের রিপোর্ট বলছে, এসব গণকবর আসলে বড় ধরনের অপরাধের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ। এটিকে জাতিসংঘ মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং গণহত্যা বলে বর্ণনা করছে। জাতিসংঘ এই গণকবরগুলোর ফরেনসিক পরীক্ষা, সেখান থেকে দেহাবশেষ উদ্ধার এবং এবং তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের লক্ষ্যে আরও তহবিল বরাদ্দের আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে যেসব পরিবার তাদের স্বজনদের খুঁজে বেড়াচ্ছে তাদেরকেও সহায়তা দেয়ার কথা বলেছে। গত বছর মার্কিন-নেতৃত্বাধীন বিমান হামলা, এবং ইরাকি সরকারি বাহিনী ও মিলিশিয়াদের মিলিত অভিযানে ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠী পরাজিত হয়, তবে কিছু এলাকায় এখনো আইএসের তৎপরতা রয়েছে। আরো পড়ুন: সরকারের অধীনে নির্বাচনে প্রস্তুত ইসলামী দলগুলো 'সংবিধানসম্মত' সমঝোতাতেই রাজী হবে ঐক্যফ্রন্ট? আটই নভেম্বর তফসিল, বিরোধীদের দাবি অগ্রাহ্য ইরাকের যে জায়গাগুলো এক সময় ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে ছিল, সেই জায়গাগুলো থেকে হাজার হাজার মৃতদেহ-ভরা দু'শতাধিক গণকবর পাওয়া গেছে - বলছে জাতিসংঘ। +text: জেব্রা ফিস বা বাংলায় যেটি অঞ্জু মাছ বলে পরিচিত, তা ব্যবহার করতে শুরু করেছেন বৈজ্ঞানিকরা। গিনিপিগ বা কখনও বানরের ওপরেও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে হয় গবেষণার খাতিরে। কিন্তু সেই ধারণাটা পাল্টে যেতে চলেছে। বৈজ্ঞানিকরা এখন ইঁদুরের পরিবর্তে এক ধরনের মাছ ব্যবহার করতে শুরু করেছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য জেব্রা ফিস বা বাংলায় যেটি অঞ্জু মাছ বলে পরিচিত, তা ব্যবহার করতে শুরু করেছেন বৈজ্ঞানিকরা। এই মাছ গোটা উপমহাদেশেই সহজলভ্য। তবে এছাড়াও রয়েছে তার আরও অনেক গুণাগুণ, যার মধ্যে একটি হল, তাদের অনেক অঙ্গপ্রত্যঙ্গই মানুষের মতো। সেজন্য কোন রোগীকে ঠিক কোন ওষুধ দেওয়া যেতে পারে, তা চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা জেব্রা ফিসের ওপরে গবেষণা করে সহজেই জেনে নিতে পারছেন। পরীক্ষার মাধ্যম হিসাবে কেন ইঁদুর বা বানরের তুলনায় জেব্রা ফিস বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার জন্য সুবিধাজনক, জানতে চেয়েছিলাম ভারতের সেন্টার ফর সেলুলার এন্ড মলিকিউলার বায়োলজির পরিচালক রাকেশ মিশ্রর কাছে। মি. মিশ্র বলছিলেন, "প্রথমত, ইঁদুরের ওপরে পরীক্ষা চালানোর জন্য যে বিরাট আয়োজন, অনেক জায়গা বা বিপুল খরচ করতে হয়, জেব্রা ফিসকে পরীক্ষার জন্য তৈরি করতে তার এক শতাংশও খরচ করতে হয় না।" "খুব সহজেই প্রচুর সংখ্যায় জেব্রা ফিস রাখা যায় গবেষণাগারে। দ্বিতীয়ত, ইঁদুর ছাড়া বানরজাতীয় প্রাণীর ওপরে পরীক্ষা চালাতে গেলে অনেক নিয়মকানুন মানতে হয়, এথিকসের কারণে। নিতে হয় ছাড়পত্র। জেব্রা ফিসের ক্ষেত্রে সেসব প্রয়োজন হয় না। এজন্যই পরীক্ষাগারে জেব্রা ফিসের ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে," বলেন তিনি। ক্যান্সার চিকিৎসাতেও জেব্রা ফিস নিয়ে চলছে গবেষণা। আরো পড়তে পারেন: থাই গুহায় উদ্ধার অভিযান শুরু: ঝুঁকি কতোটা? যে কারণে গোল্ডেন বুটের দাবিদার হ্যারি কেইন গাছের শেকড় কীভাবে পাল্টে দিলো নারীর ভাগ্য ভারতেই এখন অন্তত ৪০টি গবেষণাগারে জেব্রা ফিস ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে তার মধ্যে ৩-৪টি কেন্দ্রে অত্যাধুনিক পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে। জেব্রা ফিসকে কাজে লাগিয়ে জীববিজ্ঞান গবেষণা তো চলছেই, তার সঙ্গে মানুষের দেহে কোন রোগে কী ধরনের ওষুধ দেওয়া যেতে পারে, সেটার পরীক্ষাও খুব তাড়াতাড়ি করা সম্ভব হচ্ছে। এমনিতেই মাছ হল মেরুদণ্ডী প্রাণী। তাই বিবর্তনের সময়কাল অনুযায়ী সেটি মানুষের কিছুটা কাছে। তাছাড়া মাছের অনেক অঙ্গ প্রত্যঙ্গই মানুষের শরীরের সঙ্গে মেলে - যেমন এদের দেহে হাড় রয়েছে, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটা মানবশরীরের মতো, যকৃৎ, হৃৎপিণ্ড প্রভৃতি রয়েছে। যদিও শ্বাসযন্ত্র নেই। "তবে এসবের থেকেও জেব্রা ফিসের একটা বড় বৈশিষ্ট্য হল তাদের ভ্রূণটা শরীরের বাইরে বিকশিত হয়। তাই বাইরে থেকেই লক্ষ্য রাখা যায় গোটা প্রক্রিয়াটি," জানাচ্ছিলেন রাকেশ মিশ্র। তিনি বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় জেব্রা ফিস অতি দ্রুত কাজে দেয়। সিসিএমবির পরিচালক রাকেশ মিশ্রর কথায়, "ধরুন কোনও রোগীর দেহে একটা টিউমার পাওয়া গেল। সেখান থেকে কোষ সংগ্রহ করে একসঙ্গে অনেকগুলি জেব্রা ফিসের শরীরে প্রবেশ করানোর তিন থেকে চারদিনের মধ্যেই ওই মাছের শরীরেও টিউমার তৈরি হয়ে যাবে। তার পরেই টিউমারসহ মাছগুলির শরীরে নানা ধরণের ওষুধ প্রয়োগ করে দেখে নেওয়া যায় যে ঠিক কোন ওষুধটি ওই বিশেষ টিউমার সাড়াতে সবথেকে উপযুক্ত।" বলা হচ্ছে, জেব্রা ফিস নাকি গণনাও করতে পারে। তিনি বলেন, "এছাড়া ক্যান্সারের চিকিৎসাতেও জেব্রা ফিস ব্যবহার করা হচ্ছে। এর কারণ হলো একেকটি ক্যান্সার জিনগতভাবে একেক ধরনের। তাই একই ওষুধ নানা জনের ওপরে প্রয়োগ করা হলে সঠিক ফল নাও দিতে পারে।" "এক্ষেত্রে নির্দিষ্টভাবে ক্যান্সারের ধরনটি চিহ্নিত করে সঠিক মাত্রায় ওষুধ প্রয়োগ করা যাবে। আর গোটা পরীক্ষার ফল পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষাও করতে হবে না। দিন সাতেকের মধ্যেই জানা যাবে যে কোন ওষুধ কী পরিমাণে রোগীকে দেওয়া উচিত," বলছিলেন রাকেশ মিশ্র। হায়দ্রাবাদ শহরের সেন্টার ফর সেলুলার এন্ড মলিকিউলার বায়োলজি বা সিসিএমবি কোষ এবং আণবিক জীববিজ্ঞান গবেষণার প্রধান কেন্দ্র। এই সপ্তাহে সেখানে হাজির হয়েছিলেন এমন অনেক জীববিজ্ঞানী, যারা জেব্রা ফিসের ওপরে নানা গবেষণা চালাচ্ছেন। এর মধ্যে একটি গবেষণাপত্র অনেকের নজর কেড়েছে, যা হল এই জেব্রা ফিস কী সংখ্যা গণনা করতে পারে? ওই গবেষণাপত্র যিনি লিখেছেন, সেই কাভেরী রাজারামন ইন্দিরা, বিবিসিকে বলছিলেন, "জেব্রা ফিস যে পরিমানগতভাবে আলাদা বস্তু পৃথকভাবে চিনতে পারে, তা প্রমাণিত। আমি যে গবেষণাটা করছি, তাতে খোঁজার চেষ���টা করছি যে জেব্রা ফিস আসলে কত অবধি গুনতে পারে।" "এটা দেখেছি যে এক দুই আর তিনের মধ্যে তারা ফারাক করতে পারছে। তবে তা সত্যিই গণনা করার ক্ষমতা না কি অন্য কোনও প্রক্রিয়ায় মাছটি বিভিন্ন পরিমাণ খাদ্যের মধ্যে ফারাক করছে, তা এখনও প্রমাণিত হওয়ার অপেক্ষায়," বলেন তিনি। নানা ধরনের বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার জন্য ইঁদুর বা বানরের ব্যবহারের চল বহুদিনের। জীববিজ্ঞান নিয়ে যারাই পড়াশোনা করেন, তাদের ইঁদুর নিয়ে কাটাছেঁড়া করতেই হয় গবেষণাগারে। +text: ভারতের বাজারে কর্নাটকের পেঁয়াজ এসে গেছে বলে বলা হচ্ছে তবে সে দেশের পেঁয়াজ রফতানিকারকদের অনেকেই বিবিসিকে জানিয়েছেন, বাজারে এখন নতুন ফসল এসে গেছে এবং দামও অনেকটাই কমেছে - কাজেই এখন আবার রফতানি শুরু করা হলে অসুবিধার কিছু নেই। তা ছাড়া ভারতের যে মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে সরকার দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম নাগালে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল, সেই ভোটপর্বও মিটে গেছে দুদিন আগে। এই পটভূমিতে ভারত থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি আবার কবে নাগাদ শুরু হতে পারে? আসামের রাজধানী গৌহাটিতে মঙ্গলবারও এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছিলেন, ভারত তাদের দেশে আচমকা না-বলে কয়ে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেওয়ায় তাদের খুবই অসুবিধায় পড়তে হয়েছে। দিল্লিতে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৪ অক্টোবর, ২০১৯ সেই নিষেধাজ্ঞা যেন অবিলম্বে তুলে নেওয়া হয়, সেই অনুরোধও জানিয়েছিলেন তিনি। ওই অনুষ্ঠানে ভারতের একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও আসাম ও ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও হাজির ছিলেন। তাদের সামনেই মি. মুনশি আরও জানান, ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলও নাকি তাকে আশ্বাস দিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের নির্বাচন মিটে গেলেই বাংলাদেশে আবার পেঁয়াজ যাওয়া শুরু হবে। এদিকে ভারতের শীর্ষ রফতানিকারকরাও কিন্তু মনে করছেন এখন আবার বিদেশে পেঁয়াজ পাঠাতে কোনও বাধা নেই। ভারতের 'পেঁয়াজ রাজধানী' বলে পরিচিত নাসিক থেকে গ্রিবল এগ্রো এক্সপোর্টের রাহুল চৌধুরী বলছিলেন, "এখন আবার রফতানি শুরু করা যেতেই পারে - আমাদের ক্রেতারা নেপাল-বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কায় অপেক্ষা করছেন।" ভারতের একটি শীর্ষ পেঁয়াজ রফতানিকারক সংস্থার সাইট "প্রয়োজনে ��কটা এমইপি, অর্থাৎ ন্যূনতম রফতানি মূল্য চালু রাখা হোক, তাতে ক্ষতি নেই।" "কিন্তু বাজারে নতুন ফলন এসে গেছে, চাষীদের কাছে এখন মজুতও বিশাল।" তামিলনাডুর এস এস এক্সপোর্টসের প্রধান ষান্মুগাভেল আবার বলছিলেন, "বাজার এখন অনেকটাই পড়ে গেছে - আর তা ছাড়া ২১শে অক্টোবর মহারাষ্ট্রে ভোট হয়ে যাওয়ার পর আমি তো আশা করেছিলাম নিষেধাজ্ঞা এদিনই উঠে যাবে।" "বৃষ্টিতে নাসিকের পেঁয়াজ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কর্নাটকের পেঁয়াজ কিন্তু বাজারে চলে এসেছে।" "কিন্তু সারাদিন অপেক্ষা করার পরও কোয়েম্বাটোরের ডিরেক্টোরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড থেকে আজও কোনও ঘোষণা এল না," বেশ হতাশার সুরেই বলছিলেন তিনি। গত তিন সপ্তাহে ভারতে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেছে প্রায় চল্লিশ শতাংশ বস্তুত গত মাসে একটা সময় ভারতে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে ৫১ রুপি পৌঁছেছিল - যেটা এখন নেমে এসেছে ৩০-৩২ রুপিতে। কিন্তু ভাবনগরের মোদী এক্সপোর্টসের সন্দীপ মোদী আবার মনে করছেন, অসময়ের বৃষ্টিতে পেঁয়াজের বাজারে আবার আগুন লাগতে পারে। তিনি বিবিসিকে বলেন, "মহারাষ্ট্রে এখন লেট মনসুনের কারণে পেঁয়াজের মান খারাপ হয়ে যেতে পারে, নতুন ফসল উঠতেও দেরি হতে পারে।" "খেয়াল করবেন, গত সপ্তাহেই হোলসেলে যে পেঁয়াজ ছিল ২৮ রুপি কেজি, সেটাই কিন্তু আজ ৩৭ রুপিতে পৌঁছে গেছে।" বস্তুত বাজারে এই ওঠাপড়ার কারণেই কেন্দ্রীয় সরকার রফতানি নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি তুলে নেওয়া নিয়ে সংশয়ে ভুগছে। তামিলনাডুর এই সংস্থাটি বলছে তারা এখনই পেঁয়াজ রফতানির জন্য প্রস্তুত তিন সপ্তাহ আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফরের সময় কিছুটা অনুযোগের সুরেই বলেছিলেন, ভারত দুম করে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেওয়ায় তার হেঁশেলেও এখন পেঁয়াজ ছাড়াই রান্না করতে হচ্ছে। তখন দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার বলেন, "পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হাসিনার মন্তব্য ভারতের নজরে পড়েছে - এবং এই উদ্বেগ কীভাবে প্রশমিত করা যায় সেটাও দেখা হচ্ছে।" কিন্তু তার পর থেকে ভারত শুধুমাত্র ২৯শে সেপ্টেম্বরের আগে খোলা পেঁয়াজ রফতানির এলসি-গুলোই অনার করেছে - আগে সেটাও তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে সরকারের সেই বক্তব্য সামনে আসার পর তিন সপ্তাহ কেটে গেলেও ভারত এখনও নতুন করে পেঁয়াজ রফতানি ��ালু করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। এ বিষয়ে সরকারের সংশিষ্ট মহলগুলো শুধু বলছে, পরবর্তী চব্বিশ ঘন্টাতেই এই সিদ্ধান্ত চলে আসতে পারে - আবার চব্বিশ দিন লেগে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। পেঁয়াজ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাংলাদেশ নতুন করে ভারতের কাছে অনুরোধ জানানোর পরও দিল্লি এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে এখনও দ্বিধায় ভুগছে। +text: ইতালি ফেরত অনেক প্রবাসী আশকোনা হজক্যাম্পের পরিবেশ নিয়ে অভিযোগ তুলে সেখানে কোয়ারেন্টিনে থাকবেন না বলে জানান। বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পরও দেখা গেছে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ থেকে আসা প্রবাসীরা খেয়াল খুশি মতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার সরকারি নির্দেশনা মানছেন না। এ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হওয়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আজ (শনিবার) জানিয়েছেন, চলতি মাসের শুরু থেকে এ পর্যন্ত যতো মানুষ বিদেশ থেকে এসেছেন তাদের তালিকা তৈরি করে কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, প্রয়োজনে তালাবদ্ধ করে কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে পুলিশকে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, "আমাদের দেশের অনেক মানুষ এতো দায়িত্বজ্ঞানহীন যে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হলেও তারা জানালা দিয়ে লাফিয়ে, গেটের দরজা দিয়ে লাফিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য আমরা পুলিশকে বলেছি প্রয়োজনে তাদেরকে তালাবদ্ধ করে রাখতে। তাদের অনেককে তালাবদ্ধ করেই রাখা হচ্ছে।" "এটা করা হচ্ছে তার ভালোর জন্য, তার পরিবারের ভালোর জন্য। আর মানুষ ভাবছে তাদেরকে জেলে বন্দি করে রাখা হচ্ছে।" বাংলাদেশে বর্তমানে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছে ৫০ জন। এবং হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন প্রায় ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। যদি ব্যাপক সংখ্যক মানুষকে কোয়ারেন্টিন করার প্রয়োজন হয় সেজন্য ঢাকার দুটি স্থান প্রস্তুত করতে সশস্ত্র বাহিনীকে বলা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। শক্ত হচ্ছে জেলা প্রশাসন তবে এই ভাইরাসে মৃত্যুর ঘটনা এবং স্থানীয় প্রশাসনের কড়া অবস্থানের ভয়ে কোয়ারেন্টিন নিয়ে সচেতনতা আগের চাইতে কিছুটা হলেও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসকরা। শিবচরের গোয়ালকান্দা গ্রামের বাসিন্দা ভলু শিকদারও কোয়ারেন্টিন নিয়ে মানুষের চিন্তা ভাবনায় কিছুটা পরিবর্তনের আভাস পেয়েছেন। চলতি মাসে তার গ্রামে ইতালি ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে বেশ কয়েকজন প্রবাসী বেড়াতে আসেন। বিদেশ থেকে ফেরার পর সবাইকে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে সরকারি নির্দেশনা দেয়া হলেও সেই প্রবাসীদের কাউকেই তিনি সেটা মেনে চলতে দেখেননি। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি হলেও অনেকে নিয়ম মানছেন না। বরং ওই প্রবাসীদের তিনি দেখেছেন পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটানোর পাশাপাশি হাটে, বাজারে, মসজিদে, খেয়াল খুশিমতো ঘুরি বেড়াতে। তবে ৮ই মার্চ যখন প্রথম কারো করোনাভাইরাসে শনাক্ত হওয়ার খবর প্রচার হয় এবং স্থানীয় প্রশাসন শক্ত অবস্থানে যায় তখন থেকে তিনি দেখতে পান যে এই প্রবাসীদের বেশিরভাগ সতর্ক হয়েছেন। "বিদেশ থেকে ফেরার পর তারা স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতো, বাজারে যাইত, আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে যাইত। কেউ মানা করে নাই। তারা তখন বুঝে নাই আবার আমরাও বুঝি নাই যে এটা এতো ভয়ংকর। এখন এটা সিরিয়াস দেখে আর কেউ ওভাবে চলাফেরা করে না। আমরাও মানা করি।" বলেন মি. শিকদার। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বার বার সতর্ক করা হলেও অনেক প্রবাসী সুযোগ বুঝেই পালিয়ে যান নাহলে বাইরে ঘুরে বেড়ান বলে অভিযোগ করেছেন মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুল ইসলাম। ডাক্তার-নার্সরা কতটা নিরাপদ? হাসপাতালে আতঙ্ক করোনাভাইরাস এলো কোত্থেকে, ছড়ালো কিভাবে- যতসব ষড়যন্ত্র তত্ত্ব কোয়ারেন্টিন সম্পর্কে জানতে এই ভিডিওটি দেখতে পারেন: কোয়ারেন্টিন কী , কেন, কীভাবে করা হয়? এমন পরিস্থিতিতে তারা এলাকায় মাইকিং করে প্রচার করার চেষ্টা করছেন যে কেউ যদি কোয়ারেন্টিনের নিয়ম লঙ্ঘন করেন তাহলে তাদেরকে সংক্রমণ ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ আইনানুযায়ী জরিমানা করা হবে, ফৌজদারি মামলা করা হবে। প্রয়োজনে তার বিদেশ যাওয়ার কাগজপত্র জব্দ করা হবে বলেও সতর্ক করা হচ্ছে। কোয়ারেন্টিনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে যদি মানুষ সজাগ না হন তাহলে শুধুমাত্র আইন দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা রীতিমত অসম্ভব বলে জানান মি. ইসলাম। "মানুষের গায়ে তো লেখা থাকে না যে সে বিদেশ থেকে আসছে। এখন তারা যদি এই সুযোগে ঘুরে বেড়ায় সেটা তো সবার জন্য বিপদজনক। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তো সবাইকে গার্ড দেয়া সম্ভব না। এজন্য ওই মানুষগুলোর পাশাপাশি স্থানীয় মানুষদের নিজের স্বার্থে হলেও সচেতন হতে হবে। না হলে একদিন তারাও আক্রান্ত হতে পারেন। সচেতনতা ছাড়া শুধু আইন দিয়ে এটা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না।" বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে শুরু থেকেই বলা হচ্ছে যে হোম কোয়ারেন্টিন ছাড়া কোন সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। করোনাভাইরাসের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের টানা ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখা এর সংক্রমণ ঠেকানোর একমাত্র উপায় বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বারবার সতর্ক করলেও, বাংলাদেশ শুরুতে এই প্রয়োজনীয়তাকে সেভাবে গুরুত্ব দেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। +text: বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক অনেক দিন ধরেই বেশ শীতল, তবে নাগরিকদের ভিসা না দেয়ার কারণে সম্প্রতি তা যেন নতুন করে আরও তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলছেন যে মূল সমস্যাটি পাকিস্তানের দিকে থেকে। তবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা দায় চাপাচ্ছেন বাংলাদেশের ওপর। দেশটির পররাষ্ট্র দফতরের একজন কর্মকর্তা বিবিসির উর্দু সার্ভিসকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন যে ইসলামাবাদে বাংলাদেশের দূতাবাস গত সাত দিন যাবত পাকিস্তানের নাগরিকদের ভিসা দেয়া বন্ধ রেখেছে। এমনকি দূতাবাসের ভিসা বিভাগটিই বন্ধ রাখা হয়েছে। ওই কর্মকর্তা বিবিসি উর্দুকে জানান, দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক বিবাদ শুরু হয় যখন বাংলাদেশ ঢাকায় পাকিস্তান দূতাবাসে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সাকলাইন সায়িদাহকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়। এর জবাবে পাকিস্তান সেদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানায় বলে বিবিসি উর্দুর সংবাদদাতাকে বলেছেন ওই কর্মকর্তা। ভিসা বিভাগ বন্ধ থাকার কারণ সম্পর্কে যা জানা গেছে, তাহলো পাকিস্তান বাংলাদেশ হাইকমিশনে নিযুক্ত ভিসা কাউন্সিলরকে এখনো ভিসা দেয়নি, ফলে তা বন্ধ রয়েছে। বিবিসি উর্দুর সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে প্রতিদিন গড়ে ১০-১৫টি ভিসা দেয়া হয়। গত এক সপ্তাহ ধরে ইসলামাবাদে বাংলাদেশী দূতাবাস পাকিস্তানিদের ভিসা দিচ্ছে না বলে স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "যে তথ্যটা বের হয়েছে পত্রিকায়, এটা শুডবি উল্টো যে পাকিস্তান আমাদের বাংলাদেশীদের কোন ভিসা দিচ্ছে না।" কী বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী? পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, "আমাদের দিক থেকে পাকিস্তানের কোন নাগরিকের ভিসা ডিনাই (প্রত্যাখ্যান) আমরা করি না। যারাই আবেদন করে, তাদেরই আমরা ভিসা দিই। ভেরিফাই করেই দিই। কিন্তু পাকিস্তান আমাদের সাথে অসহযোগিতা করছে।" কী ধরনের অসহযোগিতা করছে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাকিস্তানে বাংলাদেশের দূতাবাসের কনস্যুলার সেকশনে যাকে নিয়োগ করা হয়েছে, তাকে পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে ভিসা না দেয়ায় তিনি তার স্টেশনে কাজে যেতে পারছেন না। তিনি বলেন, তার অনুপস্থিতিতে প্রেস উইং কর্মকর্তাকে দিয়ে কনস্যুলারের কাজ করানো হচ্ছিলো। এখন তারও ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর তিনি নতুন করে বেশ কবার ভিসার আবেদন করেছেন। কিন্তু পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কোন উত্তর দেয়া হয়নি বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মি. মোমেন বলেন, তার পরিবার বাংলাদেশ থেকে তাকে পাকিস্তানে দেখতে যেতে চাইলে তাদেরকেও ভিসা দেয়া হয়নি। আর বিষয়টি শুধু দুজন কূটনীতিকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, সাধারণভাবেই ভিসার ক্ষেত্রে পাকিস্তান 'অসহযোগিতা' করছে বলে জানান তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "পাকিস্তানে বাংলাদেশের ব্যবসার পরিমাণ তারা দিনে দিনে কমিয়ে ফেলছে। আমাদের ব্যবসায়ীদের জন্যেও ভিসা পাওয়া কঠিন হচ্ছে। তাই তাদের ব্যবসাও কমে গেছে"। বাংলাদেশ এ ব্যাপারে পাল্টা কোন ব্যবস্থা নেবে কি-না, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, "বাংলাদেশে এখন পাকিস্তানের জবাবের অপেক্ষায় আছে।" বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক এখন কোথায়? বাংলাদেশ কেন পাকিস্তানের উন্নয়নের মডেল উর্দুভাষীরা কেন বাংলাদেশের মূল সমাজে মিশতে পারেনি? 'জিন্নাহর আদর্শই এখনও পাকিস্তানের ভিত্তি' পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে কেন গ্রহণ করছে না বাংলাদেশ ঢাকায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে পাকিস্তান সাকলাইন সায়িদাহকে নিয়োগ করেছিল। কিন্তু প্রায় বছর খানেক ধরে বাংলাদেশ তাকে গ্রহণ করছে না বাংলাদেশ। এর পর থেকেই বাংলাদেশে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতের পদটি খালি রয়েছে। বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করছেন যে দুই দেশের মধ্যে নতুন করে কূটনৈতিক বিবাদ তুঙ্গে ওঠার এটিই একটি কারণ। সাকলাইন সায়িদাহকে কেন গ্রহণ করা হয়নি, তা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি। তবে তিনি মন্তব্য করেন যে কূটনীতিতে এটা অনেক এমনটা ঘটে। "যে কোনো রাষ্ট্র যাকে পছন্দ কর�� না তাকে বলেই দিতে পারে যে ওকে চাইনা। এটা তো স্বাভাবিক। সবাইকে যে নিবে নট নেসেসারিলি। এটা রাষ্ট্রের উপর নির্ভর করে। কিন্তু তাই বলে যে গো ধরে থাকবে, এমন ব্যবস্থা কোথাও নাই।" মি. মোমেন বলেন, বাংলাদেশের বহু কূটনীতিককেই বহু দেশ গ্রহণ করেনি। তার মানে এই নয় যে সেখানে ভিসা বন্ধ হয়ে গেছে। সাকলাইন সায়িদাহকে প্রত্যাখ্যান করার বিষয়ে তিনি বলেন যে এটি তিনি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার অনেক আগের ঘটনা। দুদেশের সম্পর্কে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের ক্ষত এখনো বড় কাঁটা হয়ে আছে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ও পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক বাংলাদেশে যখন মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়, তখন থেকেই পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে। পাকিস্তানের সংসদে এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সামালোচনা হয়। এমনকি পাকিস্তান সংসদে একটি নিন্দা প্রস্তাবও পাশ হয়। বাংলাদেশও পাকিস্তানের এই প্রতিক্রিয়া পছন্দ করেনি। দু'দেশ একে অপরের রাষ্ট্রদূতকেও তলব করে। ২০১০ সালে প্রথম বাংলাদেশ এই ট্রাইব্যুনাল গঠন করে এবং এর প্রথম রায় দেয়া হয় ২০১৩ সালে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মি. মোমেন বলছেন, "আমাদের ইন্টারনাল বিষয়ে তাদের ইন্টারভেনশন বাংলাদেশ পছন্দ করেনি।" চার বছর বাংলাদেশে আসতে পারছেন না যে সাংবাদিক মুনির আহমেদ পাকিস্তানের করাচীতে ডেইলি নিউজ নামের একটি খবরের কাগজের বার্তা সম্পাদক। ১৯৬০-এর দশক থেকে শিক্ষা ও কর্মসূত্রে পাকিস্তানে থাকেন যশোরের এই আদি বাসিন্দা। তিনি এখন পাকিস্তানের নাগরিক। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলছেন, "চার বছর আগে সর্বশেষ বাংলাদেশে গিয়েছিলাম। তারপর থেকে অনেক চেষ্টা করেও আর ভিসা পাওয়া যায়নি।" মি. আহমেদ আরও জানান, বাংলাদেশ থেকে আগে যারা নিয়মিত আসতেন, তারাও এখন আর আসা যাওয়া করছেন না। আবার যারা নিয়মিত বাংলাদেশে যেতেন, তাদেরও যাওয়া বন্ধ। "এতেই অবস্থা বোঝা যায়," মন্তব্য করেন এই সাংবাদিক। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান একে অপরের দেশের নাগরিকদের ভিসা দেয়া বন্ধ রেখেছে বলে দুই দেশের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। +text: রুনু ভেরোনিকা কস্তা (কালো কোট পরা) প্রথম দিনে মোট ২৬ জনকে টিকা দেয়া হয়। বুধবার বিকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এরপরেই প্রথম টিকা নেয়া বাংলাদেশে প্রথম টিকা নেয়া ব্যক্তি রুনু ভেরোনিকা কস্তার সঙ্গে বিবিসি বাংলার কথা হয়। সংবাদদাতা কাদির কল্লোলকে এই স্বাস্থ্যকর্মী বলছিলেন যে তিনি চান তাকে দেখে বাংলাদেশের মানুষ যেন টিকা নিতে অনুপ্রাণিত হন এবং তাদের মনের ভেতর যেন ভ্যাকসিন নিয়ে কোন ভয়ভীতি না থাকে। তিনি বলেন, ''ভ্যাকসিন যখন আমাদের দেশে সহজলভ্য হবে, তারা যেন নিঃসন্দেহে এই ভ্যাকসিন নিয়ে নেন। এভাবে আমরা সবাই দেশকে করোনামুক্ত করার চেষ্টা করবো।'' ''দেশে যখন করোনাভাইরাস আসে, তখনই মনে হয়েছে, এটা একটা যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এতদিন ধরে অনেকটা জয়ী হয়ে আসতে পেরেছি। এখন আমরা আরেকটি আশা দেখতে পেলাম, সেটা হলো ভ্যাকসিন,'' বলছিলেন মিজ কস্তা। গাজীপুরের মেয়ে রুনু ভেরোনিকা কস্তা টাঙ্গাইলের কুমুদিনী নার্সিং ইন্সটিটিউট থেকে ২০০২ সালে ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করেন। এরপর কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে নার্স হিসাবে কাজ করার পর ২০১৩ সালে যোগ দেন ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে। স্বামী ও দু'টি সন্তান নিয়ে তার পরিবার। একজন ফ্রন্টলাইনার হিসেবে তাকে যে টিকাটি তাদের দেয়া হয়েছে, সেটির উদ্ভাবক অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, আর ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউটে এটি তৈরি হয়েছে কোভিশিল্ড ব্র্যান্ড নাম নিয়ে। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বাংলাদেশে ভ্যাকসিন কর্মসূচি শুরু হলেও টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু মানুষের মধ্যে অনীহার কথা প্রকাশ পেয়েছে। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগ টিকা সম্পর্কিত একটি জরিপ চালিয়েছে। ওই জরিপে দেখা যায় যে বাংলাদেশের মাত্র ৩২ শতাংশ মানুষ টিকা কার্যক্রমের একেবারে শুরুতে টিকা নিতে আগ্রহী। আরও ৫২ শতাংশ আগ্রহী, তবে তারা এখনই নয়, বরং দেখে শুনে পরে নিতে চান। বুধবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, কোভিশিল্ড নামের যে টিকাটি বাংলাদেশে দেয়া হচ্ছে, "এ পর্যন্ত এটিই সবচেয়ে নিরাপদ ভ্যাকসিন, অন্য সব ভ্যাকসিনের তুলনায়"। রুনু ভেরোনিকা কস্তাও বলেন, টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলছেন, তবে তার নিজের মনে হয়েছে যে এটা নিলে কোন সমস্যা হবে না। "আমি নিজে থেকেই ভ্যাকসিন নিয়েছি।'' বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: কুর্মিটোলার নার্স রুনুকে দিয়ে উদ্বোধন হলো টিকা অভিযানের করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন নিয়ে আপনার যত প্রশ্��� ও তার উত্তর করোনাভাইরাসের টিকা নিতে হলে জন্মসনদ দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে ভারতের কোভিড টিকাগুলো সম্পর্কে আমরা কতটা জানি রুনু ভেরোনিকা কস্তা সাংবাদিকদের বলেন, তিনি স্বেচ্ছায় টিকা নিতে আগ্রহী হয়েছেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রুনু কস্তার সঙ্গে আরও চারজন টিকা নিয়েছেন, যারা হলেন কুর্মিটোলা হাসপাতালের চিকিৎসক আহমেদ লুৎফুল মোবেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা, ট্রাফিক পুলিশের সদস্য দিদারুল ইসলাম এবং সেনাবাহিনীর কমকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম ইমরান হামিদ। প্রথম দিনে এই পাঁচ জনের বাইরে আরও ২১ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে - যাদের মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ রয়েছেন। উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিজ কস্তার সাথে কুশল বিনিময় করেন। "ভয় পাচ্ছ না তো" - শেখ হাসিনা জানতে চান তার কাছে। জবাবে মিজ কস্তা বলেন, "জ্বি না"। বাংলাদেশে প্রথম টিকা নেয়া ব্যক্তি হওয়ায় গর্ব অনুভব করছেন বলে জানান রুনু কস্তার। ''শারীরিকভাবে আমার কোন সমস্যা নেই, আমি পুরোপুরি সুস্থ রয়েছি,'' বলেন তিনি। বাংলাদেশে এরই মধ্যে ৭০ লাখ ডোজ কোভিশিল্ড টিকা মজুত করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০ লাখ ডোজ এসেছে গত ২১শে জানুয়ারি ভারতের শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে। আর বাকী ৫০ লাখ ডোজ এসেছে সিরাম ইন্সটিটিউটের সাথে ক্রয়চুক্তির অংশ হিসেবে। ভারতে সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি কোভিড-১৯ টিকা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে কয়েকদিন ধরে ঢাকার আরও চারটি হাসপাতালে শ'পাঁচেক মানুষকে পরীক্ষামূলকভাবে টিকা প্রদান করা হবে এবং এদের সবাই স্বাস্থ্যকর্মী। বাকী হাসপাতালগুলো হচ্ছে - উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল। টিকা দেওয়ার পর এই মানুষগুলোকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। আর পুরোদমে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে আগামী ৮ই ফেব্রুয়ারি। শুরুতেই পাবেন সম্মুখসারিতে থাকা বিভিন্ন পেশার মানুষেরা। পাশাপাশি ৫৫ বছরের ঊর্ধ্বে বয়সের ব্যক্তিরাও টিকা নেয়ার সুযোগ পাবেন। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন নিয়ে আপনার যত প্রশ্ন ও তার উত্তর করোনাভাইরাসের টিকা নিতে হলে জন্মসনদ দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে ভারতের কোভিড টিকাগুলো সম্পর্কে আমরা কতটা জানি বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকা নেয়ার আগে-পরে করনীয় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তাকে এক ডোজ ভ্যাকসিন দেয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশে শুরু করেছে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে টিকা দেয়ার কর্মসূচি। +text: মশিউর রহমান রাঙ্গা, জাতীয় পার্টি মহাসচিব বিবিসি বাংলার সাথে এক সাক্ষাৎকারে নূর হোসেনের ভাই আলী হোসেন বলেছেন, তার মৃত ভাই সম্পর্কে এমন মন্তব্য করার পর মি. রাঙ্গা সংসদে বসলে সংসদ 'কলুষিত' হবে। "আমি মনে করি এরপরও তার (মশিউর রহমান রাঙ্গার) সংসদে বসা জাতির জন্য কলঙ্কজনক।" আলী হোসেন বলেন, তার মৃত ভাইয়ের সম্পর্কে এরকম মন্তব্য শুনে তার বৃদ্ধা মা কান্নাকাটি করেছেন। "শোনার পর আমিও ভাবছিলাম কেন তিনি এমন কথা বললেন। এটা কি ওনার কথা, নাকি জাতীয় পার্টির কথা...যেখানে ১৯৯৬ সালে এরশাদ সাহেব নিজে আমার ভাইয়ের ব্যাপারে সংসদে দাঁড়িয়ে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন, তারপরও এমন মন্তব্য কেন...?" ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকায় বুকে-পিঠে গণতন্ত্রের দাবিতে শ্লোগান লেখা নূর হোসেন গুলিতে নিহত হওয়ার পর সামরিক শাসন বিরোধী গণ-আন্দোলনের প্রতীকে পরিণত হয়েছিলেন। রোববার ঐ হত্যাকাণ্ডের বার্ষিকীতে দলের এক অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মন্তব্য করেন, "...নূর হোসেন কে ছিল? সে ছিল নেশাখোর, ইয়াবাখোর, ফেনসিডিলখোর...।" তার এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার সংসদেও আওয়ামী লীগের একাধিক এমপি মি রাঙ্গার তীব্র সমালোচনা করেন, নূর হোসেনকে নিয়ে তাকে ক্ষমা চাইতে বলেন। চাপের মুখে মশিউর রহমান রাঙ্গা তার এই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: এরশাদের পতন: পর্দার আড়ালে যা ঘটেছিল জেনারেল এইচ এম এরশাদ। ১৯৯৬ সালে সংসদে দাঁড়িয়ে নূর হোসেনের মৃত্যুর জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন কেন তিনি এমন মন্তব্য করলেন? বিবিসিকে রাঙ্গা কেন এত বছর পর নূর হোসেন সম্পর্কে এমন সব আপত্তিকর মন্তব্য তিনি করলেন? বিবিসির এই প্রশ্নের জবাবে, জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেন যে রোববার নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আওয়ামী লীগের এক সমাবেশে জে. এরশাদকে কটুক্তি করে দেওয়া স্লোগানের প্রতিক্রিয়ায় তিনি ঐ মন্তব্য করেন। "সেদিন আওয়ামী লীগের সভায় 'এরশাদের দুই গালে জুতো মারো তালে ��ালে' ধরণের স্লোগানে আমাদের কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়েছিল। তারা বলছিলো, আমরা যখন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক শরীক, সেখানে এমন স্লোগান কেন হবে।" "সে সময় আমি বলি নূর হোসেন সেদিন অপ্রকৃতিস্থ ছিলেন, নিজের বুকে কেউ নিজে লিখতে পারেনা, কেউ হয়ত লিখে দিয়েছিল।" মি. রাঙ্গা স্বীকার করেন নূর হোসেন সম্পর্কে বক্তব্য দেওয়ার সময় 'দুটো শব্দ বের হয়ে গিয়েছিল।' "আমি ঐ শব্দ দুটো আর ব্যবহার করতে চাইনা। আমি দুঃখিত। আমি অনুতপ্ত। আমার ভুল হয়েছে। আমি তার পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছি।" তবে একইসাথে জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, জেনারেল এরশাদ যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন জাতীয় পার্টির সরকারের অনেক মন্ত্রী বিশ্বাস করতেন যে নূর হোসেনকে দিয়ে তাদের নেতার পতন ত্বরান্বিত করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। নব্বইয়ের দশকে ঢাকায় এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে নিহত তরুণ নূর হোসেনকে 'ইয়াবাখোর ফেনসিডিলখোর' বলে কটুক্তি করার পর জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবং এমপি মশিউর রহমান রাঙ্গা প্রচণ্ড চাপে পড়েছেন। +text: 'ফাদার অব দ্য তালেবান': সামিউল হক তার এক আত্মীয় দাবি করছেন, অজ্ঞাতনামা হত্যাকারীরা এসে তার রাওয়ালপিন্ডির বাড়িতে তাকে ছুরি মেরে হত্যা করে। সামিউল হক উত্তর পশ্চিম পাকিস্তানে একটি মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। তাকে তালেবান আন্দোলনের প্রধান নেপথ্য পুরুষ হিসেবে গণ্য করা হয়। কারণ এই আন্দোলনের প্রথম সারির নেতাদের শিক্ষক ছিলেন তিনি। পরে তিনি একটি দল থেকে পাকিস্তানে সেনেটর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। সামিউল হক পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনতোয়া প্রদেশের আফগানিস্তান সীমান্তের কাছে দারুল উলুম হাক্কানিয়া মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। পাকিস্তানের দূর্গম একটি এলাকায় সামিউল হককে স্বাগত জানাতে যাচ্ছেন তার সমর্থকরা। তার ছাত্রদের একজন ছিলেন তালেবান নেতা মোল্লা ওমর। মোল্লা ওমর আশির দশকে তার সহপাঠীদের নিয়ে আফগানিস্তানে যান সোভিয়েত সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। আরও পড়ুন: 'আফগানিস্তানের ৭০ শতাংশ এলাকাতেই তালেবান' তালেবানকে অস্ত্র দিচ্ছে রাশিয়া? আফগান তালেবান নেতা মোল্লা ওমর মারা গেছেন পরে এই মোল্লা ওমরই তালেবান প্রতিষ্ঠা করেন। আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত ইউনিয়ন চলে যাওয়ার পর গৃহযুদ্ধ এবং চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে ১৯৯৬ সালে তালেবান ক্ষমতা দখল করে। তালেবান আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্ক সত্ত্ব���ও সামিউল হক যে মাদ্রাসা চালাতেন, পাকিস্তানে সেটির কোন অসুবিধা হয়নি। এটি পাকিস্তানের আঞ্চলিক সরকারগুলোর কাছ থেকে অর্থ বরাদ্দ পেত। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সামিউল হকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বলেছেন, পাকিস্তান এক গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী নেতাকে হারিয়েছে। 'ফাদার অব দ্য তালেবান' বলে পরিচিত এক ৮০ বছর বয়স্ক মুসলিম নেতা সামিউল হক পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি শহরে নিহত হয়েছেন। +text: ঢাকায় ভারতের ভিসা নিতে বাংলাদেশিদের ভীড় যে দিন সিএমসি-তে সাইফুল ইসলামের মায়ের অস্ত্রোপচার হয়, সে দিন রাতেই গোটা ভারত জুড়ে ‘টোটাল লকডাউন’ জারির কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিদেশি নাগরিকদের জন্য সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়েছিল আরও অনেক আগে থেকেই, বন্ধ হয়ে গিয়েছিল আন্তর্জাতিক বিমানের ওঠানামাও। ফলে হাসপাতাল মাকে এখন ডিসচার্জ করে দেওয়ার পরও মহাবিপদে পড়েছেন সাইফুল ইসলাম। তার দেশে ফেরার এখন কোনও উপায়ই নেই। ভেলোর থেকে তিনি বিবিসিকে বলছিলেন, “এদিকে হাতের টাকা-পয়সাও ক্রমশ ফুরিয়ে আসছে।” “হাসপাতালের বিল মেটালেও এই বাড়তি দিনগুলোর জন্য হোটেলের ভাড়া কীভাবে দেব বুঝতে পারছি না। আর কতদিন যে থাকতে হবে সেটাও তো কিছুই জানি না!” তারই মতো অবিকল একই দশা নারায়ণগঞ্জের সাখাওয়াত হোসেন বা কুমিল্লার বিক্রম কর্মকারের – পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা করাতে এসে তারাও এখন ভেলোরে আটকা পড়ে গেছেন। পয়সার টানাটানিতে গুনেগেঁথে শুধু ডাল আর ভাত দিয়ে গতকাল দুপুরের খাওয়া সেরেছেন তাদের কেউ কেউ। লকডাউনের জেরে ভারতের বাজারেও জিনিসপত্রের দাম এখন অগ্নিমূল্য – তাতে আরও ভোগান্তি বেড়েছে এই বিদেশিদের। দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালে হার্টের চিকিৎসা নিতে এসে একইভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্বামী-পুত্রকে নিয়ে ভারতে আটকা পড়ে গেছেন চট্টগ্রামের এক নারী যিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে নিজের নাম অবধি বলতে চান না, কারণ ভারতে তার ভিসার মেয়াদও ফুরিয়ে গেছে গত ২৫ মার্চ। ২৩ মার্চ দিল্লি থেকে ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের বিমানে তার সপরিবারে ঢাকা ফিরে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তার আগেই সব আন্তর্জাতিক উড়ান বাতিল করে দেয় ভারত – অগত্যা তারা এখন দক্ষিণ দিল্লির একটি গেস্ট হাউসে গৃহবন্দী। বাংলাদেশ হাইকমিশন, দিল্লি শুধু চিকিৎসা নয় – বেড়াতে এসে ভারতে আটকা পড়েছেন এ��ন বাংলাদেশী নাগরিকের সংখ্যাও কম নয়। গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে ভারত ভ্রমণের বিশাল ট্যুর প্যাকেজ নিয়ে এ দেশে ঢুকেছিলেন বরিশালের নাবিলা আঞ্জুমান ও তার আরও জনাদশেক সঙ্গী। সাড়ে তিন সপ্তাহ নিরুপদ্রবে ঘুরে বেড়ানোর পর গত ১৮ মার্চ থেকে তারা কর্নাটকের মাইসোরে আটকা পড়ে আছেন। নাবিলা বলছিলেন, “যে কোনওভাবে টাকা পাঠানোর জন্য আমরা দেশে খবর পাঠিয়েছি। বুঝতে পারছি না কীভাবে কী করব!” “আমাদের পাশের একটি গেস্ট হাউসেও বাংলাদেশী ট্যুরিস্টদের আর একটি দল আটকা পড়ে আছেন”, জানাচ্ছেন তিনি। করোনাভাইরাসের সঙ্কট সামাল দিতে ভারত তাদের বর্ডার সিল করে লকডাউন জারি করার পর এভাবেই শত শত বাংলাদেশি নাগরিক ভারতে আটকা পড়েছেন। উপায় খতিয়ে দেখছে বাংলাদেশ দূতাবাস এখন তাদের কীভাবে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব, তার উপায়গুলো বাংলাদেশ সরকার খতিয়ে দেখছে। দিল্লিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, “আমরা এই মুহুর্তে বাংলাদেশের এরকম আটকে-পড়া নাগরিকদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করছি।” সেই তালিকা তৈরি হলে তার মধ্যে থেকে যারা অবিলম্বে দেশে ফিরতে চান, তাদের বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা করে ফেরানো যায় কি না – সেই সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের ফেসবুক পেজেও এদিন (সোমবার) দিল্লি ও মুম্বাইতে তাদের দুটি হটলাইন নম্বর দিয়ে আটকে পড়া নাগরিকদের জরুরি প্রয়োজনে সেখানে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিদেশে আটকে পড়া বাংলাদেশি নাগরিকদের সুবিধার্থে বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক অনুমোদিত ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার ও ব্যাঙ্কগুলোর প্রতি যে জরুরি নির্দেশিকা জারি করেছে, তার একটি প্রতিলিপিও সেখানে দেওয়া হয়েছে। সিএমসি, ভেলোর। এই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে আটকা পড়েছেন বহু বাংলাদেশি ভিসার মেয়াদ নিয়ে কিছু ছাড় দিচ্ছে ভারত এদিকে ভারতের পক্ষ থেকেও বাংলাদেশকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, এর মধ্যে যাদের ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে তাদের কোনও জরিমানার মুখে পড়তে হবে না – এবং এই বাংলাদেশীদের ভারতে ‘ওভারস্টে’-কেও বৈধ বলে গণ্য করা হবে। সাধারণত ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও কোনও বিদেশি নাগরিক ভারতে থেকে গেলে তাকে সরকারের এফআরআরও বা বিদেশি পঞ্জীকরণ কেন্দ্রে গিয়ে মোটা অঙ্কের জরিমানা গুনতে হয়। কিন্তু ভারতের পরর��ষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি নোট পাঠিয়ে বাংলাদেশকে জানিয়েছে, এই ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে সেই জরিমানা থেকে ছাড়ের ব্যবস্থা করা হবে। চিকিৎসা বা পর্যটনের জন্য ভারতে এসে এখন আর দেশে ফিরতে পারছেন না, এরকম বাংলাদেশীর সংখ্যা মোট কত তা এখনও নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে খুব কম করে হলেও এই সংখ্যা বেশ কয়েকশো হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে – হাতে টাকাপয়সাও ফুরিয়ে যাওয়ায় তাদের বেশির ভাগই এই মুহুর্তে প্রবল বিপদে আছেন। হায়দ্রাবাদে এমনই একজন আটকে পড়া বাংলাদেশি আনোয়ার হুসেইন, গত ১৯ মার্চ যার ভিসার মেয়াদ ফুরিয়েছে। হায়দ্রাবাদ থেকে টেলিফোনে তিনি এদিন বলছিলেন, “ফেসবুকে দেখলাম আমাদের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী না কি বলেছেন যে নাগরিকরা ১৪ দিনে সরকারি সেন্টারে কোয়ারেন্টিনে থাকার মুচলেকা দেবেন শুধু তাদেরই না কি ফেরানো হবে।“ “আমি বলতে চাই, তাতে কোনও সমস্যা নাই। ১৪ দিন কেন, আরও বেশিদিন কোয়ারেন্টিনে থাকতেও আমাদের কোনও আপত্তি নাই, কিন্তু দয়া করে দ্রুত আমাদের ভারত থেকে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন!” – রীতিমতো করুণ আর্তি জানান তিনি। দক্ষিণ ভারতের ভেলোরে বিখ্যাত ক্রিশ্চিয়ান মেডিক্যাল কলেজ বা সিএমসি-তে মায়ের লিভারের চিকৎসা করাতে গত ৫ মার্চ ভারতে এসেছিলেন ঢাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম। গত ২৪ তারিখ তার মায়ের অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্নও হয়েছে। +text: তবে ফেভারিট ইংল্যান্ড সেই জায়গাটি আগে থেকেই দখলে রেখেছে। কিন্তু এই চার নম্বর পজিশনে কি তারা থাকতে পারবে? সেটার উত্তর দেবে সময়। টুর্নামেন্টের শুরুতে হট ফেভারিট ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল, পাকিস্তান, শ্রীলংকা ও অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়ার শঙ্কা জাগিয়ে তুলেছে। সাথে আশাবাদী করেছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এমনকি শ্রীলংকাকেও। এই তিনটি দলেরই সেমিফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা এখনো টিকে আছে। আরো পড়ুন: যেসব কারণে গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের আজকের ম্যাচ মাশরাফীর প্রতি সাবেক অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারের আহ্বান মাশরাফী কি বিশ্বকাপে নিজের খেলা নিয়ে সন্তুষ্ট কিন্তু কীভাবে... বাংলাদেশ ম্যাচ-৭ জয়-৩ হার-৩ ফলাফল নেই-১ পয়েন্ট-৭ নেট রান রেট- -০.১৩৩ তামিম ইকবাল ও মুস্তাফিজুর রহমানের ফর্ম নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে বাংলাদেশ দলে। (ফাইল ছবি) বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ এজবাস্টনে ভারতের বিপক্ষে। আগামী ম��্গলবার এই ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। তবে এই ম্যাচটি জেতা সহজ হবে না বাংলাদেশের জন্য। কিন্তু কোনভাবে যদি বাংলাদেশ এই ম্যাচে জয় পায়, সেক্ষেত্রে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫ই জুলাইয়ের ম্যাচটি 'ডু অর ডাই' হয়ে যেতে পারে। পাকিস্তান ও বাংলাদেশ ৫ই জুলাই লর্ডসে মুখোমুখি হবে। এই দুই ম্যাচে জয় পেলে বাংলাদেশের পয়েন্ট দাঁড়াবে ১১। শ্রীলংকা ম্যাচ-৬ জয়-২ হার-২ ফলাফল নেই-২ পয়েন্ট-৬ নেট রান রেট- -১.১১৯ আন্ডারডগ হিসেবে আসলেও এখনো শ্রীলঙ্কার সুযোগ আছে সেমিফাইনাল খেলার এখন পর্যন্ত ছয় ম্যাচে মাত্র দুটো জয় পেয়েছে শ্রীলংকা। কিন্তু তাদের এখনো সুযোগ রয়েছে সেমিফাইনালে ওঠার। দুটো ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় শ্রীলংকা পেয়েছে দুটো মূল্যবান পয়েন্ট। এরপর হারিয়েছে ইংল্যান্ডকে। শ্রীলংকার ম্যাচ বাকি আছে তিনটি। - ২৮শে জুন, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে - পহেলা জুলাই, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে, এবং - ৬ই জুলাই, ভারতের বিপক্ষে। যদি শ্রীলংকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জিতে যায় সেক্ষেত্রে তারা সেমিফাইনালের পথে বড় ধাপ এগোবে। কিন্তু অন্যথা বিপত্তি ঘটবে, কারণ যদি পয়েন্ট সমান হয়ে যায় সেক্ষেত্রে বিবেচ্য হবে মুখোমুখি লড়াই, সেখানে পিছিয়ে শ্রীলংকা, এমনকি নেট রান রেটেও নেতিবাচক শ্রীলংকার অবস্থান। পাকিস্তান ম্যাচ-৬ জয়-২ হার-৩ ফলাফল নেই-১ পয়েন্ট-৫ নেট রান রেট- -১.২৬৫ ৫ ম্যাচে ১৫ উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ আমির পাকিস্তানের অন্যতম খ্যাতি 'অনুমান করা কঠিন' এমন দল হিসেবে, এই বিশ্বকাপেও সেটার ছাপ রেখেছে দলটি। প্রথম ম্যাচেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১০৫ রানে অল-আউট হওয়া দলটি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তোলে ৩৪৮ রান, জয়ও তুলে নেয় ১৪ রানে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তান যদি জিতে যায়, সেক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের চেয়ে ১ পয়েন্ট পেছনে থেকে পাঁচ নম্বরে থাকবে দলটি। নিউজিল্যান্ডের বিপেক্ষ যদি হেরেও যায় সেক্ষেত্রে তাদের পরবর্তী দুটো ম্যাচ আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের বিপক্ষে। যদিও এই দুই ম্যাচ জিতলেই যে পাকিস্তান সেমিফাইনাল খেলবে সেটা নিশ্চিত নয়। সেক্ষেত্রে অন্যদের ফলাফলের দিকেও চোখ রাখতে হবে মিকি আর্থার ও সরফরাজের দলকে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: তৃণমূল নেতা কি আসলেই 'ঘুষের টাকা' ফেরত দিলেন? একজনের ব্যবহারে ইন্টারনেট সংযোগ ফিরল সুদানে যে পবিত্র শহরে মসজিদ নি���িদ্ধ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যাওয়ার লড়াই জমে উঠেছে, একটি জায়গার জন্য লড়াই হবে চারটি দলের। +text: পাবনা সদর থানার ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ, এক নারী থানায় এসে যার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছিল, তাকেই বিয়ে করতে বাধ্য করেছিলেন তিনি। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হককে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়া বিয়ে আয়োজনে সহযোগিতা করার অভিযোগে সাব-ইন্সপেক্টর একরামুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, "তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে থানা প্রাঙ্গণের ভেতরে বিয়ে দেয়ার অভিযোগটি প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হয়েছে। আর এ কারণেই ওই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।" তদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে মি.ইসলাম আরো বলেন, পাবনা শহরের বাসিন্দা এক নারী সদর থানায় ধর্ষণের অভিযোগ আনলে, গত ৬ই সেপ্টেম্বর রাতে তাকে থানায় ডেকে নিয়ে পূর্বের স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করা হয়। সেই সঙ্গে ধর্ষণের যিনি মূল অভিযুক্ত তাকেই বিয়ে করতে বাধ্য করা হয় অভিযোগকারী নারীকে। ওই রাতেই এই বিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটে এবং থানা প্রাঙ্গণেই এসব করা হয়। এ ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা উঠে। বিষয়টি গড়ায় হাইকোর্টেও। পরে, গত সোমবার ওসি ওবাইদুল হকের কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চায় জেলা পুলিশ। একই সাথে এ ঘটনায় মামলা নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়। গঠন করা হয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। পুলিশ সুপার জানান, এই ধর্ষণ মামলায় ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন ধর্ষণের শিকার ওই নারী। তার অভিযোগ, এদের মধ্যে তিন জন ধর্ষণ করেছে এবং বাকি দুই জন ধর্ষণে সহায়তা করেছে। সন্দেহভাজনদের মধ্যে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে দুই জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দিয়েছে। এদিকে থানায় বিয়ের ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং এ বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে জানান মি. ইসলাম। পাবনায় ধর্ষণের অভিযোগকারী এক নারীর সাথে অভিযুক্তকে থানায় বিয়ে দেয়ার ঘটনায় জড়িত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা পুলিশ। +text: গার্মেন্টস শ্রমিক, ফাইল ফটো। মালিকরা এই টাকা পাবেন দুই শতাংশ হারের সুদে ঋণ হিসাবে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যে শিল্প তাদের উৎপাদনের ৮০ শতাংশ রপ্তা��ি করে, তারাই এই প্রণোদনার টাকা পাবে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রপ্তানি শিল্পের মালিকদের প্রণোদনা পাওয়ার একমাত্র শর্ত হচ্ছে - এই টাকা দিয়ে শ্রমিকের বেতন দিতে হবে। বিশ্লেষকরা বলেছেন, বড় রপ্তানি শিল্পের জন্য এমন সুবিধা বিবেচনা করা হলেও ছোট শিল্প কারখানা বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য কোনো পরিকল্পনা না থাকায় তা অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না। করোনাভাইরাস দুর্যোগের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অর্থনীতিও মন্দার মুখে পড়তে পারে, এনিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন বলে কর্মকর্তারা বলেছেন। সেজন্য কয়েকদিন আগেই জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রপ্তানি শিল্পের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। বুধবার বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে সেই প্রণোদনার টাকা দেয়ার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়। এই বৈঠকে মন্ত্রীপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, সেনাবাহিনী প্রধান এবং রপ্তানি শিল্পসহ ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর নেতারা উপস্থিতি ছিলেন। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: করোনাভাইরাসের কারণে চাকরি হারাচ্ছেন অনেক কর্মী করোনাভাইরাসের ‘আকস্মিক’ হামলায় বিশ্ব অর্থনীতি বিপর্যস্ত শেয়ারবাজারে ও তেলের মূল্যে ধস বিশ্বমন্দার পদধ্বনি? বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, অনুদান বা দান হিসাবে নয়, এই টাকা দেয়া হবে শর্তসাপেক্ষে ঋণ হিসাবে। "এটা প্রণোদনা মানে পরিস্কারভাবে বলা হয়েছে, এটা লোন হিসাবে দেয়া হবে রপ্তানি শিল্পকে। দুই শতাংশ হারের সুদে এই ঋণ দেয়া হবে।এবং ছয় মাস পর থেকে একটা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই টাকা শোধ করতে হবে।" "এটা দান নয়, পুরোপুরিই লোন বা ঋণ। রপ্তানি খাতের মালিকরা এই টাকা পাবেন এবং এটা সুনির্দিষ্ট করেই বলা হয়েছে যে, এই টাকা শ্রমিকের বেতনের জন্যই ব্যবহার করতে হবে।" বিশ্লেষকরা বলেছেন, মূলত গার্মেন্টস শিল্পকে বিবেচনায় নিয়েই এ টাকা দেয়া হচ্ছে। কারণ করোনাভাইরাস সংক্রমণজনিত বিশ্ব-পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে গার্মেন্টস মালিকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছিলেন। রপ্তানি শিল্পের প্রণোদনার টাকা বিতরণের রূপরেখা চূড়ান্ত করতে বাণিজ্য মন্ত্রীর নেতৃত্বে বৈঠকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, সেনাবাহিনী প্রধান এবং ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিল���ন। গার্মন্টস মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ'র প্রেসিডেন্ট রুবানা হকও বাণিজ্যমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলছিলেন, শ্রমিকদের বেতন দিতে তাদের আরও অর্থের প্রয়োজন হবে। "আমরাতো পাঁচ হাজার কোটি টাকা পুরোটা পাব না। যদি শতকরা ৮৪ ভাগ আনুপাতিক হারেও ধরেন, তাহলেও আমরা চার হাজার দুইশো কোটি পাবো। আমাদের গোটা তৈরি পোশাক খাতে কিন্তু প্রতি মাসে চার হাজার কোটি টাকা বেতন দেয়।" রুবানা হক আরও বলেছেন, "এটা শুধু কেন সরকারের ঘাড়েই পড়বে? আমাদের সব ব্র্যান্ডরা যদি সময়মতো টাকাটা দিয়ে দিতো তাহলেওতো আমরা বাঁচতাম। আমরাতো তাদের কাছে কোনো অনুদান চাচ্ছি না। আমরা তাদের কাছে যা রপ্তানি করেছি, তার অন্তত ২৫ শতাংশ অর্থ পেলে আমরা বেতনগুলো দিতে পারতাম।" "কারণ আগামী ছয় মাসে দেখা যাবে আমাদের আড়াইশো বা পাঁচশো কোটি ডলারের ঘাটতির মুখে পড়তে হতে পারে।" বাংলাদেশে একটি গার্মেন্টস কারখানা, ফাইল ফটো। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মানুষকে ঘরে রাখতে বাংলাদেশে এখন যে লকডাউন চলছে, রপ্তানি খাতের বাইরেও ছোট সব শিল্প কারখানা এবং ক্ষুদ্র ব্যবসা সবকিছুই বন্ধ হয়ে রয়েছে। সরকারি গবেষণা সংস্থা বিআইডিএস এর নাজনীন আহমেদ বলছিলেন, ছোট শিল্প বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সংকটটা বেশি, তাদের জন্য কোনো সহায়তার পরিকল্পনা না থাকায় অর্থনৈতিক মন্দা সামলানো কঠিন হবে। "এই সময়ের অর্থনীতির যে মন্দাভাব, সেটি সার্বিকভাবে পুরো অর্থনীতিতেই বিরাজমান। কাজেই শুধু রপ্তানি খাতের জন্য এই সুবিধা দেয়াটা যৌক্তিক নয়। কারণ রপ্তানি খাতের সাথে জড়িতরা বড় ব্যবসাযী এবং তাদের ঝুঁকি সামলানোর সক্ষমতাও বেশি। বরং সরকারের প্রণোদনার লক্ষ্য হওয়া উচিত ছিল বিভিন্ন খাতের যারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং ছোট শিল্প" - বলে নাজনীন আহমেদ। বাণিজ্যমন্ত্রী অবশ্য দাবি করেছেন, ছোট শিল্প বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাদের কিভাবে সহায়তা করা যায়, তা পরে আলোচনা করে তারা পরিকল্পনা ঠিক করবেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণজনিত অর্থনৈতিক সংকট সামলাতে বাংলাদেশ সরকার গার্মেন্টস সহ রপ্তানি খাতের জন্য প্রণোদনা হিসেবে পাঁচ হাজার কোটি টাকা বিতরণের এক রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে। তবে শর্ত হলো, এ টাকা দিয়ে শ্রমিকদের বেতন দিতে হবে। +text: এ অবস্থায় ভাল একটি সাহিত্যের বই খুঁজে বের করে, সেটা পড়া হতে পারে, ���বচেয়ে ভাল কোন প্রচেষ্টা। তাহলে মনে প্রশ্ন আসতেই পারে যে বই কীভাবে আপনার জীবনে ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করতে পারে? এমন নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বিবিসি, 'বিবলিওথেরাপিস্ট' এর একটি প্যানেলকে একত্রিত করে যারা তাদের জীবনের নানা সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহার করেছে এই বইগুলোকে। তাদের থেকে নেয়া কিছু অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ জেনে নেয়া যাক। বই আপনার মেজাজ ঠিক করতে আর মনের ব্যাটারি রিচার্জে সাহায্য করে। মানসিক চাপ কমিয়ে পুনর্জীবিত করে তোলে: সঠিক ধরণের সাহিত্য আপনাকে যেকোনো বিষয় সম্পর্কে একটি নতুন দৃষ্টিকোণ দিতে সক্ষম। যেটা কিনা আপনার মনকে সতেজ করে তুলতে সাহায্য করে। সাহিত্যিকদের মতে "একটি বই মূলত আপনাকে যে বার্তাটি দেয়, সেটি হল নিজের নীতিতে অটল থাকার। এ কারণে নানা ধরণের মানসিক পীড়া থেকে মুক্তি মেলে আর মন পুরো পরিশুদ্ধ নতুনের মতো হয়ে যায়।" আরো পড়তে পারেন: 'থানার বাইরেই ভাইয়ের কান্না শুনতে পাইতেছিলাম' ডেঙ্গু: কখন রোগকে মহামারী ঘোষণা করা হয়? মুসলিম-প্রধান কাশ্মীরের চরিত্র বদলানোই মূল লক্ষ্য? কাশ্মীরের জন্য বিশেষ আইন কেন বিতর্কিত? নিজের ঘরের বাইরে না গিয়েও বইয়ের মাধ্যমে আপনি বিশ্ব ভ্রমণ করতে পারবেন। পালিয়ে যাওয়া বই কীভাবে আপনার জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে? লেখকদের মতে, "গল্প, উপন্যাস, সাহিত্য আপনাকে সবকিছু থেকে পালাতে সাহায্য করে। ইংরেজি ভাষায় যাকে বলা হয় এস্কেপিজম বা পলায়নবাদ। এই পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি অন্য যেকোনো শিল্পের চেয়ে তীব্র ও শক্তিশালী।" "একটি চলচ্চিত্র বা টিভি অনুষ্ঠানে আপনাকে ছবি দেখানো হয়, যেখানে একটি উপন্যাসের সাহায্যে আপনি সেই ছবি বা দৃশ্যপট নিজেই তৈরি করেন। সুতরাং বই আসলে অন্য যেকোনো মাধ্যমের চাইতে অনেক শক্তিশালী। কারণ এতে আপনি অনেক বেশি জড়িত।" চিন্তায় শৃঙ্খলা আনতে সাহায্য করে বই। অগোছালো জীবন শৃঙ্খলায় আনুন বই তার কাঠামোগত বিশ্লেষণের সাহায্যে একটি অগোছালো মনে শৃঙ্খলা আনতে পারে। ঔপন্যাসিকদের অনেকেই নিজেরা যখন কোন ঝামেলায় পড়েন তখন তারা বইয়ের সাহায্য নেন। তাদের মতে, "আপনি নিজেকে চেষ্টা করতে ও সমাধান করতে পারেন বইয়ের মধ্যে ডুবে যাওয়ার মাধ্যমে।" "বইয়ের কোন অতিপ্রাকৃত গল্পের সঙ্গে সাথে নিজেকে যুক্ত করতে পারলে আপনার নিজের মনে থাকা নানা বিষয়কে এক জায়গায় এনে সমাধান���র চেষ্টা করা যায়।" যখন অন্যের হতাশা থেকে বেরিয়ে আসার গল্প পড়বেন, তখন সেটা আপনার মনকেও আশা যোগাবে। হতাশ মনকে প্রবোধ দেয় একটি শক্তিশালী সাহিত্যের শেষটি আনন্দের না হলেও - বাস্তবে এটি ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। হুইটল নামের এক ঔপন্যাসিক বিবিসিকে জানান যে, তিনি যখন ছোট ছিলেন তখন তার বাবা তাকে জ্যামাইকাতে তাঁর নিজের শৈশব সম্পর্কে বলতেন, যখন একজন গল্পকার ফসল কাটার সময় গ্রাম থেকে গ্রামে যেতেন এবং তারা দাস প্রথার গল্প বলে বেড়াতেন।" "দাসপ্রথার এই বিষয়টি অনেক কষ্টের আর হতাশাজনক। তবে এটি ইঙ্গিত করে যে মানুষকে কতো সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে টিকে থাকতে হয়েছে।" বলেন মিস্টার হুইটল। বিবিসির সঙ্গে কয়েকজন লেখক পুনরাবৃত্তির আনন্দ প্রিয় উপন্যাসগুলি বার বার পড়লে সেটি বিশেষ ধরণের 'বিবলিওথেরাপি' বা পুস্তকীয় চিকিৎসা সরবরাহ করতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে 'টেস অব ডি'উরবারভিল' বইটির কথা। বইটির এক পাঠক খুব সুন্দরভাবে নিজের উপলব্ধি ব্যাখ্যা করেন, যিনি কিনা নিজেও একজন লেখক। "আমি প্রথম যখন বইটা পড়ি, তখন আমার বয়স ছিল ১৫ বছর। আমি সত্যিই গল্পের মূল চরিত্র টেসের সাথে নিজেকে মিলিয়ে ফেলেছিলাম; দ্বিতীয় বার বইটা পড়লাম আরও ১০ বছর পরে, আমি দেখতে পেলাম যে টেস আসলে কতটা প্যাসিভ ছিলেন বা অসাড় ছিলেন। এর আরও ১০ বছর পর পুনরায় আমি বইটি পড়ি - তখন আমি টেসের প্রতিটি সিদ্ধান্তকে বুঝতে শুরু করি", তিনি বলেন। এই পাঠক কিংবা লেখকের মতে , জীবনে চলার পথে মাঝে মাঝে আপনাকে পেছনের সময়গুলোতে টেনে নিতে পারে বই- যা অনেক বড় একটি পাওয়া। আপনি নিজেকে আরও ভালভাবে জানতে পারবেন কারণ আপনি নিজের মনের স্তরগুলোয় বিচরণের সুযোগ পাবেন এই বইয়ের মাধ্যমে। যেগুলো আপনার মাথায় এতদিন পেঁয়াজের স্তরের মতো একটার সঙ্গে একটা জুড়ে ছিল।" কিশোর কিশোরীরা সংকোচের কারণে যেসব কথা সবার সঙ্গে বলতে পারেনা সেটা তারা বইয়ের মাধ্যমে পড়ে নিতে পারে নিঃসংকোচে। তরুণদের মনকে সহায়তা করছে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সঙ্কট মোকাবেলায় সাহিত্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তরুণদের জন্য এখন আরও বেশি সংখ্যক উপন্যাস লেখা হচ্ছে যা কিশোর-কিশোরীদের তাদের প্রতিদিনের জীবনে যে বিষয়গুলি মোকাবেলা করতে পারে, সেগুলি মোকাবিলায় সাহায্য করবে। সেটা হত পারে বুলিং বা কটূক্তি, মাদক, সমকামিতা, সামাজিক বর্জনসহ আরও নানা ইস্যু।" "যে বিষয়গুলি তাদের জীবনে ঘটতে পারে, অথচ এতদিন হয়তো তারা সেটা বুঝতেই পারেনি। আমি সত্যিই মনে করি যে একটি বই আমাদের মধ্যে থাকা হিমায়িত সমুদ্রকে ভেঙে দেওয়ার কুড়াল হিসেবে কাজ করতে পারে এবং এটি যে কোনও যুগের ক্ষেত্রেই সত্য।"- বলেন সেই লেখক। লেখালেখি আপনাকে আবেগের রোলারকোস্টারে ঘোরাতে থাকে। আরও পড়তে পারেন: তিন লেখকের টার্গেটে গুপ্তচর 'মাসুদ রানা' একুশের বইমেলায় ভিন্নমতের বই কতটা বেরুচ্ছে? এ্যান লিস্টার: আধুনিক যুগের 'প্রথম লেসবিয়ান নারী' লেখা কি মনের জন্য ভাল? বই পড়ার যেমন মানসিক উপকার রয়েছে, তেমনটা কি লেখার ক্ষেত্রেও আছে? আসলে একজন লেখকের জীবন মানসিক স্বাস্থ্যের বিবেচনায় অনেকটা একটি মিশ্র ব্যাগের মতো। যার মধ্যে অনেক প্রয়োজনীয় কিছু থাকে। এর মধ্যে একটি হল অনেক মানসিক ট্রমা বা আবেগ বের করে দেয়ার ক্ষমতা। এক্ষেত্রে লেখা লেখি দুর্দান্তভাবে কাজে আসে। পরিশেষে এটা বলতেই হয় যে, যখন কোন বই পাঠকের সুস্থতার ওপর প্রভাব ফেলে বা পাঠককে সুস্থ করে তোলে। ওই বইয়ের লেখকের জন্য এরচেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কিছুই হতে পারেনা। যখন জীবনে চলার পথ অনেক কঠিন হয়ে যায় তখন ঠিক কী করা উচিত? +text: ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপের বাসিন্দা নতুরার তোলা বিখ্যাত সেল্‌ফি। ডিসট্রিক্ট জাজ উইলিয়াম অরিক বুধবার তার রায়ে বলেন, মার্কিন সংসদ বা প্রেসিডেন্ট চাইলে বন্য প্রাণীকেও মানুষের জন্য তৈরি আইনের আওতায় আনতে পারেন, তবে কপিরাইট আইনের ক্ষেত্রে সেটা প্রযোজ্য হতে পারে না। `পেটা` নামে বন্য প্রাণী রক্ষা বিষয়ক একটি এনজিও গত বছর স্যান ফ্রান্সিসকোর আদালতে মামলা দায়ের করে বলেছিল, নাতুরা নামে ছয়-বছর বয়সী ঐ বানর যেহেতু নিজেই ছবিগুলি তুলেছে, তাই এই ছবি ব্যবহার করে যত অর্থ আয় হবে, সেই কপিরাইটের অর্থ বানরটির সেবা যত্নেই ব্যয় করা উচিত। ২০১১ সালে ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপে ছবি তোলার সময় ব্রিটিশ নেচার ফটোগ্রাফার ডেভিড স্লেটারের ক্যামেরাতে ম্যাকাক জাতের এই বানরটি নিজেই তার কতগুলো ছবি তুলেছিল। এই ছবিগুলি পরে সারা বিশ্বে জনপ্রিয় হয়েছিল। এমনকি উইকিপিডিয়াতে বলা হয়েছিল এই ছবির কপিরাইট কারো নেই, কারণ ছবিগুলো কোন মানুষের তোলা নয়। অন্যদিকে, মি. স্লেটার ঐ মামলাটিকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছিলেন, এই ছবিগুলির কাপিরাইট তার কোম্পানির। আর ��িশ্বে এই অধিকার সংরক্ষিত থাকা উচিত সারা বিশ্বে। যুক্তরাষ্ট্রের কপিরাইট কর্তৃপক্ষ গত বছর তাদের নীতিমালায় পরিবর্তন এনে বলে যে এখন থেকে শুধু মানুষের তোলা চিত্রকর্মকেই কপিরাইটের নিরাপত্তা দেয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্রের স্যান ফ্রান্সিসকোর এক আদালত বলছে, ইন্দোনেশিয়ার একটি বানর, কতগুলো সেল্‌ফি তুলে যে বিশ্বজোড়া খ্যাতি অর্জন করেছে, সেই ছবির কপিরাইট তার হতে পারে না। +text: অনেকে বলছেন ভোট বাড়াতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা। ফেব্রুয়ারি মাসে এই জল্লাদ পদের জন্য বিজ্ঞাপন দেয়া হলে ১০০টির বেশি আবেদন পরেছিল। বিজ্ঞাপনে প্রার্থীদের 'শক্তিশালী নৈতিক চরিত্র' থাকতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছিলো। আরো পড়ুন: মৃত্যুদণ্ড: বিশ্বের কতগুলো দেশে এখনো চালু আছে সমকামিতার জন্য মৃত্যুদণ্ড: পিছু হটলো ব্রুনেই ইমাম ছাড়াই আ্যালাবামার মুসলিম বন্দীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ কর্মকর্তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর? বিজ্ঞাপনে আরও বলা ছিল যোগ্য প্রার্থীকে 'মানসিকভাবে শক্ত' হতে হবে এবং ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সী শুধুমাত্র শ্রীলংকান পুরুষরাই এই পদের জন্য আবেদন করতে পারবেন। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম বলা হয়েছে তারপরও দুইজন নারী ও দুইজন মার্কিন নাগরিক আবেদন করেছিলেন। অবশেষে দুইজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যাদের দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির কারা কর্তৃপক্ষের একজন মুখপাত্র। দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড বিরোধীরা এর প্রতিবাদ করছেন। পাঁচ বছর আগে দেশটির সর্বশেষ জল্লাদ ফাঁসির বেদী দেখার পর পদত্যাগ করেছিলেন। গত বছরও একজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো কিন্তু তিনি ভয়ে কাজেই আসেননি। যে কারণে হঠাৎ এই নিয়োগ দেশটিতে ১৯৭৬ সালের পর থেকে আর কোন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি। ওই বছর থেকে দেশটিতে কোন অপরাধের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার বিষয়টি স্থগিত রাখা হয়েছিলো। কিন্তু এখন সেই স্থগিতাদেশ শেষ হচ্ছে চারটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার মাধ্যমে। এই জল্লাদদের নিয়োগের পরই দেশটির প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা ঘোষণা দিয়েছেন যে মাদক ব্যাবসার সাথে জড়িত ওই চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। কেন মৃত্যুদণ্ড প্রথা আবার চালু করছে শ্রীলংকা? শ্রীলংকায় খুন, ধর্ষণ এবং মাদক কারবারিদের জন্য শাস্তি হল মৃত্যুদণ্ড। ১৯���৬ সালের পর মৃত্যুদণ্ড প্রথা আবার চালু করছেন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। কিন্তু শাস্তি ঘোষণা করা হলেও ১৯৭৬ সালের পর থেকে কোন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়না। প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা বলছেন, দেশটিতে মাদক কারবারিদের মোকাবেলা করতেই মৃত্যুদণ্ড প্রথা আবার চালু করা হচ্ছে। এই বছরের শেষের দিকে দেশটিতে নির্বাচন রয়েছে। রাজনীতির বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে তার ভোট বেড়ে যেতে পারে। প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা বলেছেন, "আমি মৃত্যু পরোয়ানায় সই করেছি। তাদেরকে এখনো জানানো হয়নি। আমরা এখনি তাদের নামও ঘোষণা করতে চাইনা কারণ তাতে কারাগারে অশান্তি সৃষ্টি হতে পারে।" তিনি বলছেন শ্রীলংকায় দুই লাখের মতো মাদকাসক্ত ব্যক্তি রয়েছে এবং কারাগারে যারা সাজা ভোগ করছেন তাদের ৬০ শতাংশই মাদকদ্রব্য সম্পর্কিত ঘটনার সাথে জড়িত। মৃত্যুদণ্ড প্রথা আবার চালু করার সিদ্ধান্তের পর অবশ্য পশ্চিমা বিশ্বের সমালোচনার শিকার হচ্ছে শ্রীলংকা। অন্যান্য খবর: সড়ক দুর্ঘটনা: হাসপাতালে নেয়ার পথে এত মৃত্যু কেন? প্লাস্টিক ব্যাগের বাচ্চাটিকে নিতে আগ্রহী শত পরিবার লন্ডনে এসে যেভাবে খুনি হয়ে উঠলো খুরাম বাট শ্রীলংকায় দীর্ঘ ৪৩ বছর পর প্রথমবারের মতো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্য দুইজন জল্লাদকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সামনে চারটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতেই দেয়া হয়েছে এই নিয়োগ। কেমন প্রার্থী চাওয়া হয়েছিলো? +text: নৌবাহিনীর এই সাবমেরিনটিই নিখোঁজ হয়েছে, ফাইল ছবি এসময় ডুবোজাহাজটিতে ৫৩ জন ক্রু ছিল। জাহাজটিতে তিনদিনের অক্সিজেন ছিল। জাহাজটির সন্ধানে যারা উদ্ধার তৎপরতা পরিচালনা করছিল তারা ওই জাহাজের কিছু জিনিসপত্র পেয়েছে এবং তা থেকেই ধারণা করা হচ্ছে যে সাবমেরিনটি ডুবে গেছে। যেসব জিনিস পাওয়া গেছে তার মধ্যে রয়েছে জায়নামাজ, গ্রিজের একটি বোতল যা লুব্রিক্যান্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয়, একটি যন্ত্র যা টর্পোডের হাত থেকে জাহাজটিকে রক্ষায় সাহায্য করে। স্ক্যান থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, সাবমেরিনটি সমুদ্রের সাড়ে আটশ মিটার গভীরে নিমজ্জিত অবস্থায় রয়েছে, সচল অবস্থায় এত গভীরে যাওয়ার সক্ষমতা এই সাবমেরিনের নেই। বালি দ্বীপের কাছে সমুদ্রে টর্পেডো মহড়া চালানোর সময় এটি নিখোঁজ হয়ে যায়। যেসব জিনিস পাওয়া গেছে সেগুলো সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়েছে। নিখোঁজ হওয়ার সাথে সা��েই শুরু হয় উদ্ধার তৎপরতা। কারণ জাহাজটিতে যে পরিমাণ অক্সিজেন ছিল তা দিয়ে ক্ররা শনিবার সকাল পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। ইন্দোনেশিয়ায় নৌবাহিনীর প্রধান ইওদো মারগোনো বলছেন যেখান থেকে সাবমেরিনটি নিখোঁজ হয়েছে তার কাছেই এর কিছু অংশ পাওয়া গেছে। তিনি বলেছেন, স্ক্যান করে দেখা গেছে ডুবোজাহাজটি সমুদ্রের যতোটা গভীরে চলাচল করতে পারে, এটি তারচেয়েও অনেক গভীরে তলিয়ে গেছে এবং একারণেই তারা সাবমেরিনটি ডুবে যাওয়ার কথা ঘোষণা করছেন। আরো পড়তে পারেন: বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা আরো কমেছে ভারতের হাসপাতালে অক্সিজেন বিপর্যয়ে আবারো বহু রোগীর মৃত্যু বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ যে কারণে সিরামের কাছ থেকে টিকা আনার ব্যাপারে যা বললেন বেক্সিমকোর এমডি বালি দ্বীপের কাছে যেখানে নিখোঁজ হয়েছে সাবমেরিনটি বালি দ্বীপের কাছে সমুদ্রে মহড়া চালানোর সময় সাবমেরিনটির সঙ্গে বুধবার সকালে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এসময় এটি ডুব দেওয়ার জন্য অনুমতি চাইছিল। জার্মানির তৈরি এই ডুবোজাহাজটি ৪০ বছরেরও বেশি পুরনো। তবে ২০১২ সালে এতে কিছু কাজ করা হয়। নৌবাহিনী বলছে সাবমেরিনটিতে কোনো সমস্য ছিল না। তবে জাহাজটি যেখানে ডুবে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে সেখানে কিছু তেল পাওয়া যাওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে তেলের ট্যাঙ্কের হয়তো কোনো ক্ষতি হয়েছে। নৌবাহিনীর প্রধান বলেন, "আমরা ডুবোজাহাজটির বেশ কিছু পার্টস পেয়েছি। এসবের কিছু কিছু জাহাজটিতে লাগানো ছিল। বাইরে থেকে চাপ তৈরি না হলে এগুলো সেখান থেকে বের হয়ে আসতো না।" কর্মকর্তারা বলছেন, সমুদ্রে তেল ছাড়াও কেআরআই নানগালা জাহাজের কিছু জিনিসও পাওয়া গেছে। এগুলো আর কারো কাছে থাকার কথা না। এছাড়াও যেখানে এসব জিনিস পাওয়া গেছে তার দশ মাইল ব্যাসার্ধের এলাকার মধ্য দিয়ে কোন জাহাজ চলাচল করেনি। ইন্দোনেশিয়ায় বুধবার নিখোঁজ হয়ে যাওয়া নৌবাহিনীর সাবমেরিনটি ডুবে গেছে বলে ঘোষণা করেছে সেদেশের সামরিক বাহিনী। নিখোঁজ হওয়ার তিনদিন পর নৌবাহিনী আজ শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাবমেরিনটি ডুবে যাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে। +text: এক বছর আগে আটক করা হয়েছিলো কার্টুনিস্ট কিশোরকে আজ এক আদেশে কিশোরকে ছয়মাসের জন্য জামিন দেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানো ছাড়াও জাতির জনকের প্র���িকৃতি, জাতীয় সংগীত এবং জাতীয় পতাকাকে অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছিলো। কার্টুনিস্ট কিশোরের ভাই আহসান কবির বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন যে, উচ্চ আদালত কার্টুনিস্ট কিশোরকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন। এর আগে কার্টুনিস্ট কিশোর ও একই মামলার আসামি মুশতাক আহমেদের ছয়বার জামিন আবেদন নাকচ হয়েছিলো আদালতে। মুশতাক আহমেদ কারাগারে থাকাকালে গত বৃহস্পতিবার মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: গুজব ছড়ানোর অভিযোগে লেখক ও কার্টুনিস্ট গ্রেপ্তার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: উদ্বেগ কোথায়? সরকারের সমালোচনা বন্ধ করতেই কি কার্টুনিস্ট ও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা? কার্টুনিস্ট কিশোর ও লেখক মুশতাকের মুক্তি চায় অ্যামনেস্টি মামলার এজাহারে যা বলা হয়েছে মামলার এজাহারে র‍্যাব দাবি করেছে 'আই এম বাংলাদেশি' নামে একটি ফেসবুক পাতার মাধ্যমে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ণ করার বা বিভ্রান্তি ছড়াবোর উদ্দেশ্যে, অপপ্রচার বা মিথ্যা জানা সত্ত্বেও গুজবসহ বিভিন্ন ধরণের পোস্ট দেয়া আছে যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে ও আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়। "আই এম বাংলাদেশি পেজ পর্যালোচনায় দেখা যায় পেজটির এডমিন সায়ের জুলকারনাইন এবং আমি কিশোর, আশিক ইমরান, ফিলিপ শুমাখার, স্বপন ওয়াহিদ, মুশতাক আহমেদ নামের ফেসবুক আইডিসহ পাঁচজন এডিটর পরস্পর যোগসাজশে উক্ত ফেসবুক পেজটি পরিচালনা করে আসছে"। লেখা হয়েছে এজাহারে। এতে আরও বলা হয়, আলামত পর্যালোচনা করে রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট, মহামারি করোনা ভাইরাস, সরকার দলীয় বিভিন্ন নেতার কার্টুন দিয়ে গুজব ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রমাণ পাওয়া যায়। বাংলাদেশে যখন করোনাভাইরাসের বিস্তার শুরু হয়, তখন থেকেই গুজব ছড়ানোর অভিযোগে ৫০ জনের বেশি ব্যক্তিকে আটক করেছে র‍্যাব ও অন্য বাহিনী ২০২০ সালের ৫ই মে লেখক মুশতাক আহমেদ, কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নানকে আটক করে র‍্যাব। পরে দিদারুল ইসলাম ও মিনহাজ মান্নান জামিনে মুক্তি পেলেও জামিন পাননি মুশতাক আহমেদ ও কার্টুনিস্ট কিশোর। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার মুশতাক আহমেদ কারাগারেই অসুস্থ হয়ে মারা যান। লেখক মু���তাক আহমেদ ও কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরের জামিনের আবেদনের শুনানির নির্ধারিত দিন সোমবার আদালতে মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর খবর আদালতে আইনজীবীরা অবহিত করেন। এরপর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় আটক কার্টুনিস্ট কিশোরের জামিনের আবেদন করলে আদালত তেসরা মার্চ আদেশ দেয়ার কথা জানান। এর আগে রোববার তাকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন নাকচ করেছিলো ঢাকার একটি আদালত। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নিয়ে উদ্বেগ ছিল শুরু থেকেই। ২০২০ সালের মে মাসে বাংলাদেশের পুলিশ কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর এবং লেখক মুশতাক আহমেদকে ঢাকার বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। তাদের বিরুদ্ধে "ফেসবুকে করোনাভাইরাস নিয়ে গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানো", "জাতির জনকের প্রতিকৃতি", "জাতীয় সংগীত" এবং "জাতীয় পতাকাকে" অবমাননার অভিযোগ আনা হয়। কে এই আহমেদ কবির কিশোর? কিশোর একজন আন্তর্জাতিক পুরষ্কার বিজয়ী কার্টুনিস্ট, যিনি সরকারি কর্মকর্তা ও তাদের নীতির সমালোচনামূলক কার্টুন আঁকার কারণে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন বলে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছিলো। তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে "লাইফ ইন দ্য টাইম অব করোনা" যা তার ফেসবুক পেজ "আই অ্যাম বাংলাদেশি"তে প্রকাশিত হয়। এতে ক্ষমতাসীন দলের নানা দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সমালোচনা করা হয়। ২০০৫ সালে দেশের একমাত্র কার্টুন ম্যাগাজিন 'উন্মাদ' কার্টুনিস্টদের জন্য পদক প্রবর্তন করে এবং প্রথম এই 'উন্মাদ' পদক পেয়েছিলেন আহমেদ কবির কিশোর। কার্টুন এঁকেছেন এবং কাজ করেছেন বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকের রম্য সাময়িকীতে। স্বৈরাচার ও জামায়াত-শিবির-রাজাকারবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে কার্টুন প্রদর্শনীতেও অংশ নিয়েছেন। তার আঁকা কার্টুন নিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও জামায়াত-শিবির-রাজাকারবিরোধী একাধিক প্রদর্শনী হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারা বাতিলের দাবিতে গণমাধ্যমকর্মীদের কর্মসূচি এ পর্যন্ত তার চারটি বই প্রকাশিত হয়েছে। শিক্ষাজীবনে খুলনা বিএল কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর বুয়েটে ভর্তি হলেও সেখানকার শিক্ষাজীবন শেষ না করেই যোগ দিয়েছিলেন নৌবাহিনীর অফিসার ক্যাডেট হিসেবে। তবে সেখানেও চূড়ান্তভাবে না থেকে ফিরে আসেন তিনি। পরে ধীরে ধীরে কার্টুনের জগতে আসেন তিনি। বাংলাদেশে ডি���িটাল নিরাপত্তা আইনে প্রায় এক বছর আগে আটক হওয়া কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরকে অবশেষে জামিন দিয়েছে ঢাকার হাইকোর্ট। +text: শনিবার দোহায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তালেবান চুক্তি স্বাক্ষর করে কিন্তু সপ্তাহ খানেক আগে আফগানিস্তানে যখন থেকে সংঘাত কমানোর উদ্যোগ নেয়া হয়, যাকে বলে এক ধরণের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে, তখন থেকে দেশটিতে এ নিয়ে কিছুটা সতর্ক আশাবাদ দেখা যাচ্ছে। স্বাভাবিক জীবনের আশা কতটা করা যাবে সেটা এখনো কেউ বলতে পারছে না। কিভাবে চুক্তি হলো? এত দীর্ঘ সময় কেন লাগলো? আঠারো বছর ধরে চলছে এই আফগান যুদ্ধ, বছরের পর বছর ধরে তালেবান ক্রমে একটু একটু করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়েছে বিভিন্ন এলাকায়, বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে স্থানীয় নির্বাচনে। যদিও দেশটির শহর অঞ্চলগুলোতে এখনো নিয়ন্ত্রণ নেই তাদের। শীর্ষ তালেবান রাজনৈতিক নেতা মোল্লা আব্দুল ঘানি বারাদার অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র এবং তালেবান নেতৃত্ব উভয় পক্ষই এখন বুঝতে পারছে যে কোন পক্ষই নিরঙ্কুশ সামরিক বিজয় লাভ করতে পারবে না। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করতে চান। এখানে যুক্তরাষ্ট্র যে ছাড় দিয়েছে, মানে যার জন্য চুক্তিটি শেষ পর্যন্ত সম্ভব হলো, তা হচ্ছে ২০১৮ সালে নেয়া নতুন মার্কিন নীতি। তার আগ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র মনে করতো আফগান সরকারের সঙ্গে তালেবানকেই প্রথম আলাপ শুরু করতে হবে। কিন্তু আফগান সরকারকে তালেবান কখনোই বৈধ হিসেবে মেনে নেয়নি। কিন্তু সে অবস্থান থেকে সরে এসে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি তালেবানের সঙ্গে বৈঠকে বসে এবং তাদের প্রধান আপত্তি অর্থাৎ আফগানিস্তানে বিদেশী বাহিনীর উপস্থিতি নিয়ে আলোচনা শুরু করে। সেই আলোচনার ফলাফলই ক্রমে শনিবারের চুক্তি স্বাক্ষর পর্যন্ত পৌঁছায়। মার্কিন সৈন্য কতদিন আফগানিস্তানে অবস্থান করবে তা এখনো পরিষ্কার নয় বিনিময়ে তালেবান সম্মত হয়েছে, ঠিক যে কারণে ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে হামলা চালিয়েছিল তা দূর করতে অর্থাৎ সন্ত্রাসবাদের পথ থেকে সরে আসবে। সংঘাতের অবসান কি হবে? এখন এই চুক্তির পর তালেবানদের সঙ্গে আফগান রাজনীতিক, বিশেষ করে সরকারের আলোচনার পথ উন্মুক্ত হলো। তবে সেই আলোচনা সহজ হবে না। তালেবানদের ইসলামী রাষ্ট্র আর আধুনিক গণতান্ত্রিক আফগানিস্তান এই দুই ধারণার মধ্যে সমন্বয় সহজ নয়। কিন্তু নারী অধিকার প্রশ্নে এখন তাদের অবস্থান কী হবে? গণতন্ত্রকে কিভাবে দেখে তালেবান? আরো পড়তে পারেন: তালেবানের সঙ্গে চুক্তি: সেনা সরিয়ে নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে কেনো এতো দীর্ঘ যুদ্ধ হচ্ছে? আফগানিস্তানে কিভাবে ঢুকেছিল সোভিয়েত বাহিনী তালেবান-মার্কিন গোপন বৈঠক যে কারণে ভন্ডুল হলো আফগান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে কতটা মূল্য দিতে হয়েছে? এসব প্রশ্নের উত্তর তখনি পাওয়া যাবে যখন আন্ত-আফগান আলোচনা শুরু হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তালেবান এসব প্রশ্নে তালেবানের অবস্থান পরিষ্কার নয়। আর আলোচনা শুরুর আগ পর্যন্ত সম্ভবত এগুলোই বড় বাধা। আলোচনা শুরুর আগে তালেবান তাদের ৫০০০ কারাবন্দীর মুক্তি দাবি করেছে। কিন্তু আফগান সরকার তালেবানকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করানোর কাজে এই বন্দিদের কাজে লাগাতে চায়। এরপর দেশটিতে সাম্প্রতিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আশরাফ ঘানি ও তার প্রতিপক্ষ আবদুল্লাহ আবদুল্লাহর মধ্যকার বিতর্কও আলোচনায় আছে। এ নিয়ে রাজনৈতিক অচলাবস্থাও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের সমন্বয়ে আলোচক দল তৈরিতে একটি বড় বাধা তৈরি করেছে। বিবিসির কাছে একজন আফগান কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, প্রক্রিয়া এখন শুরু হলেও 'আন্ত-আফগান' আলোচনা শেষ হতে বছরের পর বছর লেগে যেতে পারে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র ইঙ্গিত দিয়েছে যে যদি নতুন চুক্তি অনুযায়ী তালেবান প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে তাহলে যুক্তরাষ্ট্র এবং নেটো সহযোগীরা আফগানিস্তান থেকে আগামী ১৪ মাসের মধ্যে সব সৈন্য সরিয়ে নেবে। কিন্তু যদি কোন চুক্তি কার্যকর না হয়, তাহলে মার্কিন সেনারা দেশটিতে থাকবে না ১৪ মাস পর তারা চলে যাবে তা এখনো পরিষ্কার নয়। বিদেশী সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়টি 'শর্ত-সাপেক্ষে' হবে বলে আফগান কর্মকর্তারা মনে করেন। একজন কূটনীতিক বলেছেন, সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়টি আলোচনা শুরুর শর্ত, আলোচনার পরিসমাপ্তির নয়। তিনি আশংকা প্রকাশ করেছেন, বিদেশী সৈন্য প্রত্যাহারের পর যদি তালেবান নতুন করে সংঘাতে জড়াতে চায়, তখন সরকারি বাহিনী মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। কোন কোন বিশ্লেষক যদিও সতর্ক করেছেন এই বলে যে, এখনো পর্যন্ত তালেবানকে দেখে মনে হচ্ছে না যে তারা কোন ছাড় দেবে, এবং চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টিকে তারা নিজেদের বিজয় হিসেবে দেখে। যদিও তালেবান আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও বৈধতা চায় সেটা ইতিমধ্যেই পরিষ্কার হয়ে গেছে। দোহায় যে উৎসবের আমেজ দেখা গেছে চুক্তির সময় তাতে সেটি বোঝা গেছে, এবং চুক্তির শর্তগুলোকে তারা নিজেদের লক্ষ্য অর্জনের সুযোগ মনে করতে পারে। এখন যেকোন সাধারণ আফগানের জন্য প্রধান চাওয়া হচ্ছে, স্বল্প সময়ের জন্য হলেও যেন সংঘাতের অবসান হয়। আসছে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে যখন বসন্ত শুরু হবে, এবং দেশটির আবহাওয়া উষ্ণ হয়ে উঠবে, যেটাকে সাধারণত 'সংঘাতের মৌসুম' শুরু হবে, তখন বোঝা যাবে চুক্তির কী ফল দৃশ্যমান হবে। দোহায় শনিবার স্বাক্ষরিত চুক্তিকে যুক্তরাষ্ট্র, আফগানিস্তান এবং তালেবান কর্মকর্তা কোন পক্ষই 'শান্তিচুক্তি' আখ্যায়িত করেনি এখনো। +text: গ্রীষ্মের শুরু থেকেই বাংলাদেশে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। বুধবার দুপুর দুইটায় ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যদিও আর্দ্রতার কারণে বাস্তবে গরম ছিল আরো বেশি। মঙ্গলবার ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। আবহাওয়া দপ্তর বলছে, ১৮ থেকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু তাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে কী করতে হবে? স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিকিৎসক ডা. বেনজীর আহমেদ বলছেন, গরমের সময় শুধুমাত্র সতর্ক থেকে অনেক বিপদ এড়ানোর যেতে পারে। তিনি এজন্য বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন: ১. সূর্যের আলো এড়িয়ে চলা সকাল ১২টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত রোদের তীব্রতা বেশি থাকে। এ সময় জরুরি কাজ না থাকলে বাইরে বের না হওয়াটাই ভালো। ২. ছাতা ব্যবহার বাইরে বের হলে অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করা, যাতে সরাসরি রোদের মধ্যে থাকতে না হয়। এ সময় চওড়া কিনারাযুক্ত টুপি, ক্যাপও ব্যবহার করা যেতে পারে। মি. আহমেদ বলছেন, যারা মাঠেঘাটে কাজ করেন, তারা মাথায় 'মাথাল' জাতীয় টুপি ব্যবহার করতে পারবেন, যা তাদের রোদ থেকে রক্ষা করবে। আরো পড়ুন: ঠাণ্ডা থাকতে গিয়ে বাড়ছে পৃথিবীর তাপমাত্রা মরুভূমিতে বৃষ্টি বাড়াবে সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ প্রচণ্ড গরমে কাজ বন্ধ রেখে বিশ্রাম নিচ্ছেন একজন রিক্সাচালক ৩. বেশি করে পানি পান করা গরমে ঘাম হয়ে শরীর থেকে প্রচুর পরিষ্কার পানি বের হয়ে যায়, তখন ইলেট্রোলাইট ইমব্যালান্স তৈরি হতে পারে। এ কারণে এই সময়টাতে প্রচুর পানি পান করতে হবে। লবণ মিশিয়ে পানি পান করতে পারলে আরো ভালো। ফলের জুস খাওয়া শরীরের জন্য ভালো, তবে এ জাতীয় জুস খাওয়ার সময় দেখে নিতে হবে সেটি পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত পানি দিয়ে তৈরি কিনা। খোলা, পথের পাশের দুষিত পানি বা সরবত এড়িয়ে চলতে হবে। ৪. সূতির কাপড় পরতে হবে গরমের এই সময়টায় জিন্স বা মোটা কাপড় না পরে সুতির নরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে। এ ধরণের কাপড়ে অতিরিক্ত ঘাম হবে না এবং শরীর ঠাণ্ডা রাখতে সহায়তা করবে। গরমের সময় কালো বা গাঢ় রঙের কাপড় এগিয়ে সাদা বা হালকা রঙের কাপর পরিধান করা ভালো, কারণ হালকা কাপড় তাপ শোষণ করে কম। ৫. সঠিক জুতা নির্বাচন গরমের সময় খোলামেলা জুতা পরা উচিত, যাতে পায়ে বাতাস চলাচল করতে পারে। কাপড় বা সিনথেটিকে বাদ দিয়ে চামড়ার জুতা হলে ভালো, কারণ এতে গরম কম লাগে। সম্ভব হলে মোজা এড়িয়ে চলা যেতে পারে। ৬. ভারী ও ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন এ জাতীয় খাবার হজম করতে সময় বেশি লাগে। ফলে সেটি শরীরের ওপর বাড়তি চাপ ফেলে এবং শরীরের উষ্ণতা বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য সেটি আরো বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে। খাবারের মেন্যু থেকে গরমের সময় তেলযুক্ত খাবার, মাংস, বিরিয়ানি, ফাস্টফুড ইত্যাদি বাদ দেয়া যেতে পারে। বরং শাকসবজি ও ফলমূল বেশি করে খাওয়া যেতে পারে। ৭. পুরনো বা বাসী খাবার না খাওয়া গরমে খাবার-দাবার তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। ফলে বাসী খাবার বা আগের দিন রান্না করা খাবার খাওয়ার আগে দেখে নিতে হবে যে, সেটি নষ্ট কিনা। এ জাতীয় খাবার খেলে ডায়রিয়া, পাতলা পায়খানাসহ পেটের অসুখ হতে পারে। ৮. ঘরে পানি ভর্তি বালতি রাখা এসি না থাকলেও সমস্যা নেই। ঘরের ভেতর ফ্যানের নীচে একটি পানি ভর্তি বালতি রাখুন, যা ঘরকে খানিকটা ঠাণ্ডা করে তুলবে। ৯. প্রতিদিন অবশ্যই গোসল করা গরমের সময় প্রতিদিন অবশ্যই গোসল করতে হবে, যা শরীর ঠাণ্ডা রাখবে। দিনে একাধিকবার হাত, মুখ, পায়ে পানি দিয়ে ধুতে পারলে ভালো। বাইরে বের হলে একটি রুমাল ভিজিয়ে সঙ্গে রাখতে হবে, যা দিয়ে কিছুক্ষণ পর পর মুখ মুছে নেয়া যাবে। ১০. হিট স্ট্রোকের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা প্রচণ্ড গরমে শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে তাপমাত্রা বেড়ে গেলে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারে। ফলে মাংসপেশি ব্যথা, দুর্বল লাগা ও প্রচণ্ড পিপাসা হওয়া, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, মাথাব্যথা, ঝিমঝিম করা, বমিভাব ইত্যাদি লক্ষণ দেখা গেলে প্রেশার পরীক্ষা করে দেখতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাচ্ছেন না: বিএনপি ঘুম নিয়ে যেসব ধারণা আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে মানুষের দ্রুত রাগের পেছনে রহস্য কী? ভারতে ভোটের প্রচারে তারকা ফেরদৌস, ক্ষুব্ধ বিজেপি বৈশাখ মাস শুরু হতে না হতেই বাড়তে শুরু করেছে তাপমাত্রা। +text: বইটিতে সমকামী পুরুষের যৌন আচরণের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এই লেখকের নাম লিউ। তবে তিনি পরিচিত তিয়ান ই নামে। তার লেখা বইটির শিরোনাম "অকিউপেশন।" আনহুই প্রদেশের একটি আদালত গত মাসে তাকে এই সাজা দিয়েছে গ্রন্থে "অশ্লীল দৃশ্য" রাখার কারণে। আদালত বলছে, "উপন্যাসটিতে পুরুষদের সমকামী আচরণ তুলে ধরা হয়েছে... যার মধ্যে রয়েছে বিকৃত যৌন আচরণ যেমন বলাৎকার এবং গালিগালাজ।" কিন্তু তাকে এতো দীর্ঘ মেয়াদের কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনা চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। অনেকেই আদালতের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করছেন। চীনা সংবাদ মাধ্যম বেইজিং নিউজ বলছে, লেখিকা লিউ এই রায়ের বিরুদ্ধে আদালতে আপিল করেছেন। চীনে পর্নোগ্রাফি নিষিদ্ধ। "বাড়াবাড়ি হয়েছে" লিউকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে ৩১শে অক্টোবর। পিপলস কোর্ট তাকে এই সাজা দিয়েছে মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে "অশালীন বিষয়" তৈরি ও বিক্রি করার দায়ে। তবে এবিষয়ে বিস্তারিত জানা যেতে শুরু করে এ-সপ্তাহেই। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে এই খবরটি প্রকাশিত হওয়ার পর এনিয়ে জানাজানি হয়, বিশেষ করে সোশাল মিডিয়াতে এর বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে শুরু করে। বইটি অনলাইনে প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করতে শুরু করলে প্রথমে পুলিশকে এবিষয়ে সতর্ক করা হয়। আরো পড়তে পারেন: ব্রেক্সিট নিয়ে পাঁচটি প্রশ্ন ও তার উত্তর 'রাস্তায় বের হবার আগে থেকেই পানি খাই না' তাজমহলে পুজা এবং নামাজ পড়া নিয়ে বিতর্ক স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে, লিউ অনলাইনে সাত হাজারেরও বেশি বই বিক্রি করেছেন। এছাড়াও তিনি আরো কিছু যৌন উদ্দীপনামূলক বই বিক্রি করে আয় করেছেন দেড় লাখ ইউয়ান। সোশাল মিডিয়াতে অনেকেই বলছেন, লিউকে যে সাজা দেওয়া হয়েছে সেটা খুব বেশি বাড়াবাড়ি। ওয়েইবোতে একজন লিখেছেন, "একটা উপন্যাস লেখার কারণে ১০ বছরের জেল! এটা তো বাড়াবাড়ি হয়ে গেল!" আরেকজন ২০১৩ সালে চ��র বছর বয়সী একটি মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনার উল্লেখ করে লিখেছেন, তখন তো ধর্ষণকারীর মাত্র আট বছরের সাজা হয়েছিল! "ধর্ষণের দায়ে যিনি দোষী সাব্যস্ত হলেন তার সাজা হলো ১০ বছরেরও কম। আর নারী এই লেখককে দেওয়া হলো ১০ বছর!" লিখেছেন অন্য আরেকজন। পুরুষ সমকামিতার বর্ণনা দিয়ে উপন্যাস লেখা ও বিক্রি করার কারণে চীনে একজন নারী লেখককে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। +text: অনলাইনের 'ইপসস মরি' জরিপে অংশ নেন ১৯ হাজার চারশো আটাশ জন। জরিপের হিসাব অনুযায়ী, ইউরোপের ২৭টি দেশের ৬৬ শতাংশ মানুষ মনে করেন তারা 'জাতিগতভাবে অনেক বেশি বিভক্ত'। বিশ্বব্যাপী যে উত্তেজনা চলছে তার মূল কারণ রাজনীতি- এমনটা মনে করেন ৪৪ শতাংশ মানুষ। এছাড়া ব্রিটেনে অভিবাসী ও সেদেশের নাগরিকদের মধ্যে স্পষ্ট বিভক্তি আছে বলে মনে করেন পঞ্চাশ শতাংশ ব্রিটিশ। আরো পড়ুন: 'ভাইয়া আমারে বাঁচান, হাতটা ছুটায়া দেন' ব্রিটেনে তারেক রাজনৈতিক আশ্রয়ে, বললো বিএনপি কোন অঞ্চলে কতটা বিভাজন 'সবচেয়ে বিভক্ত' অঞ্চল ইউরোপ জরিপে উত্তরদাতাদের মধ্যে তিন-চতুর্থাংশ মনে করেন তাদের সমাজে বিভক্তি রয়েছে। আর এদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশের মতে তাদের সমাজে "অনেক বেশি বিভক্তি"। বেশিরভাগই বলছেন যে তাদের দেশে এখন যে ধরনের বিভক্তি দেখা যায়, দশ বছর আগেও এই ধরনের বিভাজন ছিল না । তবে মাত্র ১৬ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, বর্তমানে সমাজে বিভক্তির মাত্রা কমে গেছে। সমাজে দুশ্চিন্তা বিভাজনের ধারণা (আর্ন্তজাতিকভাবে) ৪৪% মনে করেন রাজনৈতিক আদর্শের কারণে সবচেয়ে বেশি বিভাজন দেখা যায় ৩৬% ধনী ও গরিবের মধ্যে বৈষম্য ৩০% জন্মগতভাবে নাগরিক এবং অভিবাসী নাগরিকদের মধ্যে বিভাজন ২৭% বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে বিভাজন ২৫% বিভিন্ন জাতির মধ্যে ১১% বৃদ্ধ ও তরুণ এবং নারী ও পুরুষের মধ্যে ইউরোপের চিত্র জরিপে ১১টি ইউরোপিয়ান দেশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়, দেশগুলো হলো- বেলজিয়াম, ফ্রান্স, জার্মানি, হাঙ্গেরি, ইটালি, পোল্যান্ড, রাশিয়া, স্পেন, সুইডেন, সার্বিয়া এবং যুক্তরাজ্য। সার্বিয়ায় সবচেয়ে বেশি বিভাজন এমন তথ্য জরিপে উঠে আসে। তিরানব্বই শতাংশ উত্তরদাতা বলছেন তাদের সমাজে 'খুব বেশি বিভক্তি' বা 'মোটামুটি বিভক্তি' দেখা যায়। ইউরোপের চিত্র "ইউরোপের সব দেশেই একই ধরনের ট্রেন্ড দেখা যায়। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের অন্তত চারজনের মধ্যে তিনজনের বক্তব্যে দেকা যা��় তাদের সমোজে হয় 'অনেক বিভক্তি' নয়তো 'মোটামুটি বিভক্তি'।" - বলছিলেন ইপসস মরি'র কর্মকর্তা গ্লেন গটফির্ড যিনি পুরো কার্যক্রমটি দেখছেন। মি: গটফির্ড বলছিলেন, ইউরোপিয়ানরা বিশ্বাস করেন সমাজে যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে তার চেয়ে বেশি সেটা বলা হয়েছে। "বিশ্বে রাজনৈতিক যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এবং যেভাবে বৈশ্বিক রাজনীতির চিত্র বদলাচ্ছে অথবা আমাদের মহাদেশের বিভিন্ন অংশে যেমনটা দেখেছি সেটার একটা প্রতিচ্ছবি হতে পারে এটি। অথবা রাজনৈতিক অবস্থার কারণে মানুষ এমনটা ভাবতে পারে। একটার সাথে আরেকটার সম্পর্ক আছে" বলছিলেন মি: গটফির্ড। লাতিন আমেরিকার রেষারেষি লাতিন আমেরিকার জরিপে অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোতে যেমন - আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, মেক্সিকো, চিলি এবং পেরু - চার ভাগের তিন ভাগে উত্তরদাতা বড় ধরনের বিভাজন আছে বলে মনে করেন। এই বিভক্তি রাজনৈতিকভাবে খুব বেশি, তবে অর্থনৈতিক প্রভাবও লক্ষণীয়। আর্জেন্টিনায় দুশ্চিন্তার ধারণা সবচেয়ে প্রকট। বিরানব্বই ভাগ উত্তরদাতারা মনে করেন দেশটি খুব বেশি বা মোটামুটি বিভক্ত; আর চল্লিশ ভাগ মানুষ মনে করেন এই বিভাজন গত ১০ বছরে আরো বেড়েছে। সত্তর ভাগের মতো আর্জেন্টিনার নাগরিক মনে করেন এই বিভাজনের মূল কারণ রাজনৈতিক মতাদর্শ। "এটি খুব, খুব বেশি," মি. গটফির্ড বলছিলেন। "মালয়েশিয়া বাদে, রাজনৈতিক কারণে আর্জেন্টিনাতেই সবচেয়ে বেশি মতবিরোধ দেখা যায়"। ইউরোপ থেকেও লাতিন আমেরিকার রাজনৈতিক বিভাজনটা বেশি বলে গবেষণাতে উঠে এসেছে। আর অর্ধেকেরও বেশি উত্তরদাতারা মনে করেন "মেরুকরণের ফলে" এই বিভাজনটা সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে, ৬৮ ভাগ ইউরোপিয়ান মনে করেন, গত দশকে এ ধরনের বিভক্তি আরো বেড়েছে, কিন্তু লাতিন আমেরিকার কম মানুষই (৫৯ শতাংশ উত্তরদাতা) এমনটি মনে করেন। দেশগুলোতে কতটা বিভাজন দেখা যায় সহিষ্ণু হয়ে উঠছে বিশ্ব? মি: গটফির্ড বলছেন, এই জরিপে কিছু ইতিবাচক তথ্যও পাওয়া গিয়েছে। দুই-তৃতীয়াংশ উত্তরদাতা একমত যে, মানুষের মধ্যে এখন পার্থক্য থেকে সাদৃশ্যই বেশি। "খুব কম সংখ্যক মানুষ মনে করেন যে ভিন্ন ধারার, সংস্কৃতির কিংবা আদর্শের মানুষের সাথে যোগাযোগ কোনো ধরনের দ্বন্দ্ব তৈরি করতে পারে," তিনি বলছিলেন। এক-তৃতীয়াংশ মনে করেন এমন মিথস্ক্রিয়া কিছু ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করলেও তা দূর করা সম্ভব। চল্লিশভাগ উত্তরদাতার মতে, এ ধরনের যোগাযোগ পারস্পরিক সম্পর্ক এবং শ্রদ্ধা বাড়িয়ে দেয়। কানাডার ৭৪ শতাংশ, চীনের ৬৫ শতাংশ এবং মালয়েশিয়ার ৬৪% উত্তরদাতা মনে করেন, তাদের সমাজ "খুব" বা "মোটামুটি" সহিষ্ণু হয়ে উঠেছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: 'অভিনেত্রী হতে চাইলে যৌন সম্পর্ক করতে হবে' পৃথিবীর প্রথম পুরুষাঙ্গ ও অন্ডকোষ প্রতিস্থাপন ‘আজ কোথায় বাংলাদেশ, আর কোথায় পাকিস্তান?' বিবিসির 'ক্রসিং ডিভাইডস' শীর্ষক এক জরিপে দেখা গেছে, অনেক ইউরোপিয়ান মনে করেন তাদের দেশগুলোতে এখন যেমন বিভক্তি দশ বছর আগেও তেমনটা ছিল না এবং সমাজের মানুষের সহনশীলতাও অনেক কমে গেছে বলে মনে করছেন ৪৭ শতাংশ মানুষ। +text: টিউশন ফি কমানোসহ স্টুডেন্টস অ্যাক্টিভিটি ফি প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের কাছে ২২শে অক্টোবর পর্যন্ত সময় চাইলেও তাতে তারা রাজি হননি। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে অন্তত দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। সেমিস্টার ফি কমানোর দাবিতে এই মাসের শুরুতে দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ইমেইলের মাধ্যমে পিটিশন জমা দিলেও কোনও সাড়া মেলেনি বলে তারা অভিযোগ করেন। এরই প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নামার কথা জানান। আন্দোলনরত শিক্ষার্থী খালেদ জোহানী তন্ময় জানান, তারা প্রতি সেমিস্টারে টিউশন ফি ছাড়াও স্টুডেন্টস অ্যাক্টিভিটি ফি অর্থাৎ কম্পিউটার ল্যাব ফি, লাইব্রেরি ফি, ইত্যাদি বাবদ সেমিস্টার ভেদে ৫,৫০০-১৫,০০০ টাকা পরিশোধ করে থাকেন। করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস কার্যক্রম যেহেতু বন্ধ, সে কারণে ওই ফি সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার, সেইসঙ্গে ক্লাস যেহেতু অনলাইনে চলছে এজন্য টিউশন ফি-র ৩০ শতাংশ ছাড়ের দাবি জানান তারা। খালেদ জোহানী তন্ময় বলেন, "আমরা তো অনলাইনে ক্লাস করছি। আর অনলাইনে ক্লাস করার সব জিনিসপত্র মানে ল্যাপটপ, কম্পিউটার আমাদের নিজেদের। বাসার বিদ্যুৎ লাইনই ব্যবহার করছি। এই সময়ে ক্যাম্পাসের কম্পিউটার ল্যাব, লাইব্রেরি, বা অন্য কোন সুবিধাই তো আমরা গ্রহণ করছি না। তাহলে এগুলোর জন্য বাড়তি ফি কেন দেব? আর মহামারির কারণে অনেকেই কষ্টে আছে। কর্তৃপক্ষ সেটা কি ভাবে না?" তবে বেসরকারি ��িশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট অনুযায়ী ফি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টি নিয়ে থাকে। শিক্ষার্থীরা যে দাবি জানিয়েছেন সেটা বোর্ডকে অবগত করা হয়েছে বলে জানান উপাচার্য আতিকুল ইসলাম। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আমাদের ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও ভার্চুয়ালি সব কার্যক্রম চলছে। ভর্তি, সার্টিফিকেট তোলা, অনলাইন ক্লাস কোনটাই বাদ নেই। সেই বাবদ খরচ তো হচ্ছেই। আমাদের অর্থনৈতিকভাবে কোন সমস্যা নেই। তবে এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে আমরা সংকটে পড়ার আশঙ্কা করছি। " এর আগের সেমিস্টারেও শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০ শতাংশ টিউশন ফি মওকুফ করেছিল। কিন্তু আসন্ন সেমিস্টারে কোনও ঘোষণা ছাড়াই এই সুবিধা বাতিল করে পরবর্তী সেমিস্টারের কোর্স রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চালু করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর কারণ হিসেবে মি. ইসলাম বলেন, "করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা এক সেমিস্টারের ফি মওকুফ করেছিলাম। এখন নতুন সেমিস্টার আসার পর ওয়েবসাইট থেকে (ফি) অটোমেটিক চলে গেছে। এখন বোর্ড বিবেচনা করবে যে তারা এই সুবিধা আবার দেবে কি না।" ফি মওকুফের এই সুবিধা তুলে নেয়ার প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করলে তাদের শান্ত করতে গতকাল বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসএমএস এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জানায় যে, ২২শে নভেম্বরে সেমিস্টার ফি কমানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে। শিক্ষার্থীরা যেন যার যার বাড়িতে ফিরে যান। ২২ তারিখের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আরও পড়তে পারেন: সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটাই ভর্তি পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া যেসব সমস্যার কারণ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় মাদক পরীক্ষার চিন্তা কেন? ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়ে মেয়েদের ভোগান্তি এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে পাঁচজন প্রতিনিধির সাথে কথা বলে জানান যে ২২ তারিখ সিদ্ধান্ত জানানো হবে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের দাবি সোমবারের মধ্যে সিদ্ধান্ত না এলে তারা আরও কড়া অবস্থান নেবেন। মি. জোহানী বলেন, "কর্তৃপক্ষ বলছে ২২ তারিখে সিদ্ধান্ত জানাবে, কিন্তু ২২ তারিখে তো ক্লাস শুরু। সিদ্ধান্ত দিতে হলে তো তার আগেই জানাতে হবে। আজকের মধ্যে সিদ্ধান্ত না এলে আমরা বিক্ষোভ অব্যাহত রাখবো।" এ ব্যাপারে উপাচার্য আতিকুল ইসলাম বলেন, "আমি বোর্ডকে তাদের দাবির বিষয়টি জানিয়ে সদয়ভাবে বিবেচনার কথা বলেছি। এজন্য ২২ তারিখ পর্যন্ত সময় চেয়েছি। ওই সময় ক্লাস চালু হলেও কোন সমস্যা নেই, টাকা তো তখনই দিতে হবে না। পরে দিলেও হবে। আমরা টাকা দেয়ার তারিখ বাড়িয়ে দেব। আমরা শিক্ষার্থীদের বলবো রেজিস্ট্রেশন করে ক্লাস শুরু করে দিতে। বোর্ড যদি টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তাহলে সেটা কমিয়েই রাখা হবে।" এর আগে রোববার সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের মূল ফটকের বাইরে অবস্থান নেন বিক্ষুব্ধ পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী। এসময় তারা ব্যানার হাতে মানববন্ধন করার পাশাপাশি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ভেতরে মিছিল করে বিক্ষোভ করে বলে জানা যায়। বিকেলের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রবেশ পথ অবরুদ্ধ করে রাখায় টানা চার-পাঁচ ঘণ্টা আটকা ছিলেন উপাচার্য মো. আতিকুল ইসলামসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য এবং প্রোক্টরের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলেও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে টিউশন ফি ৩০ শতাংশ কমানোর পাশাপাশি স্টুডেন্টস অ্যাক্টিভিটি ফি সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। +text: আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভ ও ধিক্কার উঠেছে বাংলাদেশে। ক্ষমতাসীন দলের যুব এবং ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যাপক চাঁদাবাজি, দুর্নীতি এবং অবৈধ ব্যবসা-বাণিজ্যের অভিযোগ নিয়ে যখন বাংলাদেশে ব্যাপক আলোচনা চলছে, তার মধ্যে এই সর্বশেষ ঘটনা আওয়ামী লীগের জন্য কতটা বিব্রতকর? আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলছেন, "বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ ও তরুণ সমাজের মধ্যে অস্থিরতার মাত্রাটা অনেক বেশি। সেই অস্থিরতার বহিঃপ্রকাশই এরকম মাঝে মাঝে দেখা যায়। এখন এটাও ভাববার সময় এসেছে যে বাংলাদেশে এই ধরনের রাজনীতি কী আর সমর্থন যোগ্য কিনা।" তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো, তিনি বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির কথা বলছেন কিনা? জবাবে তিনি বলেন, "ছাত্র রাজনীতিতে যদি উৎকর্ষতা না আসে, যে ছাত্ররা রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত তারা যদি শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ ভাল বজায় রাখতে না পারে, বা তারা যদি ছাত্রদের কল্যাণে কাজ করতে না পারে, তাদের সম্পর্কে মানুষের একটা নেতিবাচক ধারনা চলে আসবে।" আও��়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুল আলম হানিফ বলছেন, ছাত্রলীগ মুল সংগঠন আওয়ামী লীগকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলছে। দলের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি আবরার ফাহাদ নামের বুয়েটের ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভ ও ধিক্কার উঠেছে বাংলাদেশে। ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ নতুন নয়। প্রকাশ্যে রাস্তায় কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। যার জন্য তাদের কয়েকজনের সাজাও হয়েছে। আরো পড়ুন: বুয়েটে ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা: ছাত্রলীগের ৪ জন আটক আবরার হত্যা: ছাত্রলীগ যা বলছে ছাত্রলীগ নেতৃত্বের উপর প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্ধ টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, নিজেদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে জেরে সংঘর্ষের বহু ঘটনা রয়েছে। মাত্র কদিন আগেই জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা চাঁদা চেয়েছেন এমন অভিযোগ কেন্দ্রীয় নেতাদের কয়েকজনকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। ছাত্র লীগের ভেতরে এমন নেতাকর্মী দেখা যাচ্ছে যাদের অনেকেই নিজেদের আইনকানুনের ঊর্ধ্বে বলে মনে করেন। এরকম একটি পরিস্থিতি আওয়ামী লীগের মতো দলের সহযোগী সংগঠনে কিভাবে তৈরি হল সেই প্রশ্ন উঠছে। এই সংগঠনের যে ভাবমূর্তি এখন তৈরি হয়েছে, সেটি কি আওয়ামী লীগের রাজনীতির বড় ক্ষতি করছে? দল থেকে অনুপ্রবেশকারীদের সরিয়ে দেয়ার কথা বলা হচ্ছে। মি. হানিফ বলেন, "ছাত্রলীগ বাংলাদেশের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী একটা সংগঠন হিসেবে ছিল। এই ছাত্রলীগের অনেক গৌরবউজ্জল অতীত আছে। স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় এই ছাত্রলীগের একটা উজ্জ্বল একটা অবস্থান ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিককালে, ছাত্রলীগের কিছু কিছু কর্মকাণ্ড যেটা ছাত্রলীগকেই শুধু বিতর্কিত করছে না, এটা মুল সংগঠন আওয়ামী লীগকেও অনেক বিব্রতকর অবস্থায় ফেলছে। এটি নিয়ে অবশ্যই আমাদের বিব্রত হতে হয়।" এই পরিস্থিতি কিভাবে সামাল দেবে আওয়ামী লীগ? মি. হানিফ বলেন, পৃথিবীর যেকোনো দেশেই অপরাধকে দমন করার জন্য আইনের কঠোর প্রক্রিয়াকেই সবসময় অনুসরণ করা হয়। অবশ্যই এখানে আইনের কঠোর প্রক্রিয়া হবে। তবে তিনি বলছেন, "যারা উগ্র মানসিকতা সম্পন্ন, তাদেরকে সরিয়ে দেয়া বা তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেয়া। এই পদ্ধতিতে আমরা আশা করছি ভবিষ্যতে আমরা এই ধরনের বিব্রতকর অবস্থা থেকে আমরা হয়ত বের হয়ে আসতে পারবো" দল থেকে অনুপ্রবেশকারীদের সরিয়ে দেয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "বিশেষ করে আমাদের টানা এগারো বছর ক্ষমতায় থাকার কারণে অনেক অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছে। যারা বেশিরভাগই সুযোগসুবিধা নেয়ার জন্যেই আসে। দল থেকে এই অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা করে, তাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।" অন্যান্য খবর: 'বাংলাদেশের উপকূলে ভারতীয় রেডার ব্যবস্থার লক্ষ্য চীন' কমলা যেভাবে বিরান ভূমিকে পরিণত করেছিল সবুজ অরণ্যে নতুন করে কৃষিকাজে বিপ্লব আনছে জাপান বুয়েট নামে পরিচিত বাংলাদেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় যে কয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের বেশিরভাই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা। +text: জম্মুতে সিনেমা হলের টিকেট কাউন্টারে আগুন। বহু জায়গায় রাস্তা অবরোধ করা হয়েছে ও অনেক গাড়িঘোড়া জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভাঙচুর চালানো হয়েছে গুজরাটের নানা মাল্টিপ্লেক্সেও। এই সব দাঙ্গাহাঙ্গামা শুরু হয়ে গেছে মঙ্গলবার রাত থেকেই। এই পটভূমিতে গুজরাট, হরিয়ানা ও রাজস্থানে সিনেমা হল মালিকরা নিজে থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা তাদের মালিকানাধীন হলগুলোতে পদ্মাবত দেখানোর ঝুঁকি নেবেন না। এর আগে এই তিন রাজ্যই ছবিটি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এদিকে রাজস্থানের যে চিতোর গড় ছিল রানি পদ্মিনীর প্রাসাদ, সেই দুর্গটি কার্নি সেনার হামলার ভয়ে বুধবার বন্ধ রাখা হয়েছে। ওই দুর্গের শত শত বছরের ইতিহাসে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার কোনও কারণে চিতোর গড় বন্ধ রাখা হল। পদ্মাবতের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন দীপিকা পাডুকোন আরো দেখুন: জুবায়ের হত্যা: 'ছাত্র সংগঠনগুলোর অনৈতিক কর্মকাণ্ডের পরিণতি' যেভাবে ছড়ায় সাংবাদিক ও পুলিশের বচসার ভিডিও হাসপাতালে বাচ্চা বদল: সিনেমার চেয়েও নাটকীয় এদিকে বিক্ষোভকারীরা বুধবার দুপুর থেকেই দিল্লি-জয়পুর জাতীয় সড়ক অবরোধ করা শুরু করে। দিল্লি-আজমির জাতীয় সড়কেও জড়ো হয়ে কার্নি সেনার সদস্যরা টায়ার জ্বালাতে শুরু করে। এর আগে মঙ্গলবার রাতে গুজরাটের বিভিন্ন মাল্টিপ্লেক্সে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। পদ্মাবতের বিরোধীরা অন্তত ৫০টি গাড়ি ও টু-হুইলারে আগুন ধরিয়ে দেন, অনেক দোকানের কাঁচ ভেঙে দেওয়া হয়। এর মধ্যে মুম্বাইতে আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে জ��া তিরিশেক কার্নি সেনা কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গুজরাটের প্রধান শহর আহমেদাবাদেও আটক হয়েছেন অন্তত ৪৪জন। তবে এর পরও কার্নি সেনার প্রধান লোকেন্দ্র কালভি জানিয়েছেন, "অনেক ২৫শে জানুয়ারি আসবে যাবে - কিন্তু কিছুতেই আমরা এই ধরনের অবমাননাকর একটি ফিল্মের প্রদর্শন হতে দেব না।" এর আগে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট গত সপ্তাহে নির্দেশ দিয়েছিল, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দোহাই দিয়ে কোনও রাজ্য আলাদাভাবে এই ছবি নিষিদ্ধ করতে পারবে না এবং ২৫শে জানুয়ারি সারা দেশে এক সঙ্গেই ছবিটি মুক্তি পাবে। আহমেদাবাদে বাসে ভাঙচুর ভারতে ৭০০ বছর আগেকার চিতোরের রানি পদ্মিনীর জীবন নিয়ে তৈরি বিতর্কিত বলিউড ছবি 'পদ্মাবতে'র মুক্তির আগের দিন রাজপুত কার্নি সেনা-সহ বিভিন্ন সংগঠন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে দেশের নানা প্রান্তে তুমুল বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। +text: বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেবেন কয়েক লাখ শিক্ষার্থী যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনুষদকে চারটি ইউনিটে বিভক্ত করে আলাদা ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হয় অনুষদ ধরে, অথবা বিভাগ ধরে পরীক্ষা নেয়া হয়। ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর এবং এসএসসি ও এইচএসসি সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের একটি গড় দিয়ে মেধাক্রম তৈরি হয়। দেখা যায়, মেধাক্রমে নিচের দিকে থাকার কারণে পছন্দসই বিভাগে পড়ার সুযোগ পান না শিক্ষার্থীরা। বিভাগ-ওয়ারী ভর্তি পরীক্ষা হয় যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে সেখানেও দেখা যায় আসন স্বল্পতার কারণে পছন্দসই বিষয়ে পড়তে পারে না অনেক শিক্ষার্থী। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল এবং প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্নাতক পর্যায়ে ভর্তির কার্যক্রম শুরু হওয়ার প্রেক্ষাপটে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে ভর্তি পরীক্ষার এই পদ্ধতিগুলো কতটা যৌক্তিক, কতটা ছাত্রবান্ধব? শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা কী? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ইমামা দ্বীনা বলেছেন, "মেধাক্রম অনুযায়ী তালিকায় না আসায় এবং পছন্দের বিভাগে আসন সংখ্যা পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় তিনি ঐ বিভাগে পড়তে পারেন নি। "তার বদলে আমি যে বিষয় পেয়েছি, সেটা আমার আয়ত্তের বাইরে, এবং আগ্রহেরও বাইরে ছিল। ফলে ভর্তি হবার পর প্রথম বছরটি আমার খুব কষ্ট করতে হয়েছে।" বিজ্ঞান অনুষদের আরেক বিভা���ের শিক্ষার্থী বখতিয়ার বলছিলেন, তার ইচ্ছা ছিল চলচ্চিত্র বিষয়ে পড়ার। "পরিবারের চাপে আমি সেটা পারি নাই। ইঞ্জিনিয়ারিং-এ কোচিং করেছিলাম, কিন্তু পরিবারের শর্ত ছিল ঢাকার বাইরে যাওয়া যাবে না। শেষ পর্যন্ত এখানেই পড়তে বাধ্য হচ্ছি।" ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান আরো পড়তে পারেন: কেন শীর্ষ তালিকায় নেই বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় যৌন শিক্ষা: বাংলাদেশে কী পড়ানো হচ্ছে শ্রেণীকক্ষে বস্তি থেকে উচ্চশিক্ষা নিতে আমেরিকা যাচ্ছেন সিয়াম আইন পড়ার লক্ষ্যে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে, মেধাক্রমে নিচে থাকায় ভূগোল বিভাগে ভর্তি হতে হয়েছে সাবেরা সুলতানাকে। "ভর্তি পরীক্ষায় আমি ইংরেজিতে কম নম্বর পেয়েছিলাম, সে কারণে আইন তো পাইই নাই, বরং যে তিনটি বিষয় আমাকে অফার করা হয়েছিল, ভূগোল ছিল তার মধ্যে দ্বিতীয়। প্রথম বিষয় ছিল পরিসংখ্যান সেটাও পাইনি।" শিক্ষার্থীরা মনে করেন ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতি পরিবর্তন না হলে এ সংকটের কোন সমাধান নেই। শিক্ষার্থীদের অনেকেই পছন্দের বিষয়ে ভর্তি হতে পারে না পদ্ধতির কারণে চাপে শিক্ষার্থী-অভিভাবকেরা বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কত শতাংশ শিক্ষার্থী নিজেদের পছন্দমত বিষয়ে পড়াশোনা করতে পারেন, এ নিয়ে নির্দিষ্ট কোন পরিসংখ্যান নেই। কিন্তু গবেষকেরা মনে করেন, সেই সংখ্যা সর্বোচ্চ কুড়ি শতাংশের বেশি হবে না। তবে এই প্রক্রিয়া বদলানোর আশু কোন সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান। "এই মূহুর্তে সে রকম কোন ভাবনা নেই আমাদের। হয়তো এমন একটা সময় আসবে, যুগের চাহিদা, বিষয়ের চাহিদা, সমাজের প্রয়োজনীয়তা- সব বিবেচনায় নিয়ে সামনের দিনে হয়তো এর পরিবর্তন আসবে।" কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিন্ন ভিন্ন ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতির কারণে, স্নাতক পর্যায়ে পড়তে আসবেন এমন একজন শিক্ষার্থীকে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়ে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের পড়তে হচ্ছে নানা সংকটে। ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের এক গবেষণায় দেখা গেছে, একজন শিক্ষার্থী যদি একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেন, বিভিন্ন বিষয়ে ভর্তি কোচিং করেন তাহলে সেগুলোসহ আনুষঙ্গিক খাতে তার ৯৬ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। নিম্ন আয়ের অনেক শিক্ষার���থীর পক্ষে যে ব্যয় নির্বাহ সম্ভব হয় না। এই কারণে বর্তমানে প্রচলিত পদ্ধতি পরিবর্তন করে মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার আদলে একটি সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেবার ব্যপারে আলোচনা চলছে অনেকদিন যাবত। কিন্তু এবছরের এপ্রিলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি বলেছিলেন, কয়েকটি বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নানা কারণে এই পদ্ধতির বিরোধিতা করছে। এখন যখন ২০১৯-২০ সেশনের ভর্তি পরীক্ষার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, দেখা গেছে পুরনো পদ্ধতিতেই হচ্ছে সেটা। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহিদুল্লাহ জানিয়েছেন, তিনি দায়িত্ব নেবার পর বিষয়টি নিয়ে কোন আলোচনা হয়নি। তবে তিনি নিজে বর্তমান ব্যবস্থার খুব সমর্থক নন, সেটি জানিয়েছেন। "এ ব্যবস্থার কোন সহজ সমাধান নেই। ব্যক্তিগতভাবে আমি এই ব্যবস্থা পছন্দ করি না। একটা হতে পারে যে বিভাগ-ওয়ারী ভর্তির ব্যবস্থা করা যায়।" বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, ভর্তি প্রক্রিয়ার সময় শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করা ভর্তি ফর্ম থেকে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রতি বছর একটি বড় আয় করে থাকে। ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতি পরিবর্তনে তাদের অনাগ্রহের সেটি একটি বড় কারণ। তবে এবছর বাংলাদেশে কৃষি বিষয়ক আটটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় একইদিনে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে সমন্বিতভাবে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। বাংলাদেশে সামাজিক ব্যবস্থার কারণে ছেলেমেয়েদের উচ্চ শিক্ষার বিষয় পছন্দ করার ক্ষেত্রে শুরুতে পরিবারের পছন্দকে গুরুত্ব দিতে হয়। এরপরে যখন নিজের পছন্দ নয়, এমন একটি বিষয়ে পড়াশোনা করতে হয়, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনার পুরো সময়টি শিক্ষার্থীদের ওপর এক বিরাট চাপ হয়ে উঠতে পারে বলে অনেকে মনে করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক সামিনা লুৎফা মনে করেন, একজন শিক্ষার্থীর পরবর্তী শিক্ষাজীবন এবং পেশা নির্ধারণের ক্ষেত্রে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। "সমাজের একটা পারসেপশন তৈরি হয় কোনটা ভালো সাবজেক্ট, কোনটা কম ভালো সাবজেক্ট। এটা সমাজে তার উপযোগিতা কী হতে পারে তার ধারণা দিয়ে তৈরি হয়। এটা শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ তৈরি করে। পড়াশোনা থেকে শুরু করে পরবর্তীতে সে ঐ বিষয় সংক্রান্ত কোন পেশায় যাবে কিনা, সে সিদ্ধান্তও প্রভাবিত হয়।" আরো পড়তে পারেন: আরব বিশ্বের কাছে কাশ্মীরের চেয়ে ভারতের গুরুত্ব কেন বেশি আমাজনের আগুন নেভাতে যা করা হচ্ছে খাগড়াছড়িতে সেনাবাহিনীর সাথে 'গোলাগুলিতে' তিন জন নিহত বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল বলে মনে করেন অনেকে। একেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়ার একেক রকম ধরণ প্রচলিত আছে। +text: এম জে আকবর প্রিয়া রামানি নামের ওই সাংবাদিক এবং আরো কয়েকজন মহিলা অভিযোগ করেন যে মি.আকবর পত্রিকার সম্পাদক থাকার সময় তাদের সাথে আগ্রাসী যৌন আচরণ করেছিলেন। মি.আকবর - যিনি দি টেলিগ্রাফ এবং দি এশিয়ান এজ নামে দুটি পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন - বলছেন, এসব দাবি 'মিথ্যা এবং অতিরঞ্জিত।' এর পর প্রিয়া রামানিও একটি বিবৃতি দিয়েছেন । তাতে তিনি বলেন, এ মামলা করে মি.আকবর ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানির মাধ্যমে অভিযোগকারীদের চুপ করিয়ে দিতে চাইছেন। মিজ রামানি আরো বলেন, তিনি মামলা লড়ার জন্য প্রস্তুত। এম জে আকবর এ মামলা করা ছাড়াও মি. আকবর - যিনি ভারতের ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী - তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা অন্য নারীদের বিরুদ্ধেও মামলা করার হুমকি দেন। তিনি আরো বলেন যে তিনি পদত্যাগ করবেন না। সোমবার বিদেশ থেকে ফেরার পর মি.আকবর বলেন, যৌন হয়রানির এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বিশ্বব্যাপি নারীদের যৌন হয়রানির প্রতিবাদে গড়ে ওঠা মি-টু আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ভারতের অনেক নারীও তাদের এমন অভিজ্ঞতা প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। এম জে আকবরের প্রতিবাদ ভারতের যেসব সুপরিচিত লোকদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে - এম জে আকবর তাদের মধ্যে অন্যতম । অন্যদের মধ্যে আছেন একাধিক লেখক, সাংবাদিক, কমেডিয়ান, পরিচালক, ও অভিনেতা। যাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে তার মধ্যে আছেন প্রবীণ অভিনেতা অলোক নাথ, পরিচালক বিকাশ বাহল, সুভাষ ঘাই এবং সাজিদ খান। তারা সবাই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: ভারতীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ অভিযোগকারী সাংবাদিক প্রিয়া রামানি (বামে) এবং প্রেরণা সিং বিন্দ্রা গত ৮ই অক্টোবর তার নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে মি. আকবরের নাম করে তার বিরুদ্ধে যৌন লাঞ্ছনার অভিযোগ আনেন সাংবাদিক প্রিয়া রামানি। তিনি বলেন, ভোগ পত্রিকায় তার ২০১৭ সালে লেখা একটি নিবন্ধে তিনি যে যৌন হয়রানির অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছিলেন - তা এম জে আকবর সম্পর্কেই লেখা। তার টুইট সামনে আসার পর আরও বেশ কয়েকজন সাংবাদিক এম জে আকবরের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ করেন। রোববার টুইটারে এক বার্তায় মি. আকবর অভিযোগ করেন, নির্বাচনের কয়েক মাস আগে তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে সামাজিক মাধ্যমে তার এই অভিযোগ অস্বীকারেরও সমালোচনা করেছেন অনেক নারী। ভারতে আগামী বছর সাধারণ নির্বাচন হবার কথা। ভারতে সাবেক পত্রিকা সম্পাদক এবং বর্তমানে বিজেপি সরকারের জুনিয়র মন্ত্রী এম জে আকবর - তার নামে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনা এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মানহানির মামলা করেছেন। +text: করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা আর এ খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর একদিকে যেমন অনেকের মধ্যে বেশ উদ্বেগ-আতঙ্ক তৈরি করেছে, তেমনি কিছু প্রশ্নকেও সামনে নিয়ে এসেছে। এর একটি বড় কারণ হচ্ছে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিদিন যে বুলেটিন প্রকাশ করছে, তার সঙ্গে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যের বেশ গরমিল পাওয়া যাচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানাচ্ছে যে গত ২রা মে থেকে ৫ই মে পর্যন্ত এই চার দিনে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের রোগ কোভিড ১৯ -এ মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। অথচ এই চার দিনে কেবল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মৃত্যু হয়েছে ২৮ জনের। বাংলাদেশে সরকার যে কয়টি হাসপাতালকে বিশেষ কোভিড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করেছে, তাতে অন্যতম সংযোজন হলো ঢাকা মেডিকেল কলেজের এই করোনা ইউনিট। এসব হাসপাতাল এবং এর বাইরেও করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে অনেকের মৃত্যু খবরও এখন পাওয়া যাচ্ছে। 'হার্ড ইমিউনিটি' কী, এর জন্য কতটা মূল্য দিতে হবে? টাকা-পয়সা কি ভাইরাস ছড়ানোর মাধ্যম? চা, কফি বা গরম পানি খেয়ে কি ভাইরাস দূর করা যায়? কাদের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে আর কাদের জন্য জরুরি নয় যে সব কারণে লকডাউন শিথিল করতে বাধ্য হচ্ছে বাংলাদেশ সরকার সংবাদের ভিত্তিতে গবেষণা বাংলাদেশের বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদের উপর ভিত্তি করে সম্প্রতি পরিচালিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, গত ৮ই মার্চ থেকে ৩০শে এপ্রিল পর্যন্ত করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ৩৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থী, গবেষক, ফ্রিল্যান্সার এব�� কম্পিউটার ডেভেলপারদের সমন্বয়ে গঠিত একটি দল এই গবেষণা পরিচালনা করছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে প্রায় ২৫০ জনের মধ্যেই জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট এবং সর্দি - এর চারটি লক্ষণের মধ্যে অন্তত দু'টি লক্ষণ ছিল। এছাড়া অন্যদের মধ্যে গলা-ব্যথা, ঠাণ্ডা, বুকে ব্যথা ইত্যাদি লক্ষণ ছিল। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া হিসেব পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে গত ৮ই মার্চ থেকে ৩০শে এপ্রিল পর্যন্ত ১৬৮ জন মারা গেছেন। ফলে এমন প্রশ্নও উঠেছে যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনাভাইরাস সংক্রমণের যে চিত্র তুলে ধরছে, সেটির সঙ্গে বাস্তবতার আসলে ঠিক কতটা মিল রয়েছে। জ্বর-কাশি মানেই করোনাভাইরাস না স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা বিবিসি বাংলাকে জানান, হাসপাতাল থেকে যেসব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তার ভিত্তিতেই তারা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা প্রকাশ করেন। "শুধু লক্ষণ-উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেই আমরা বলতে পারি না যে সে ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। এমন দেখা গেছে যে মৃত্যুর পর কোভিড রোগী হিসেবে দাফন করা হয়েছে, কিন্তু পরবর্তীতে পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে।" তিনি বলেন, স্বাভাবিক সময়ে বাংলাদেশ প্রতিদিন গড়ে ২,০০০ মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০০ রোগী যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়, এমন তথ্য দিয়ে নাসিমা সুলতানা বলেন, এই রোগের লক্ষণও কোভিড-১৯ উপসর্গের মতো। তিনি বলেন, মৃত্যুর আগে কিংবা পরে - পরীক্ষার মাধ্যমে যখন একজন ব্যক্তির দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়া যায়, তখনই সেই তথ্য বুলেটিনে আপডেট করা হয়। মৃতদের করোনাভাইরাস নিশ্চিত না ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন বিবিসি বাংলাকে বলেন, গত ২রা মে থেকে শুরু করে চার দিনে করোনা বিশেষায়িত ওয়ার্ডে যে ২৮ জন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে চারজনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। তবে মৃতদের মধ্যে বাকি ২৪ জনের করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছিল কি-না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলেই জানালেন হাসপাতালের পরিচালক। তিনি বলেন, "চারজন পজিটিভ পাওয়া গেছে। বাকি যারা আছেন, তাদের মাল্টিপল কো-মরবিড কন্ডিশন (অন্যান্য রোগ) ছিল। ম্যাক্সিমাম (বেশীরভাগ রোগী) শ্বাসকষ্ট নিয়ে এসেছে, জ্বরও ছিল।" ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন বলেন, মৃতদের সবাই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কি-না, সেটি তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। যেহেতু বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ আছে, সেজন্য মৃত ব্যক্তিদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি কেন? - বিবিসি'র এমন প্রশ্নে জেনারেল নাসির উদ্দিন অবকাঠামোগত সমস্যার কথা বলেন। "আমরা যদি এদের টেস্ট করাতে যাই, তাহলে তাদের ডেডবডিগুলো রাখতে হবে। দ্যাট ইজ অ্যানাদার ক্রাইসিস (সেটা আরেকটা সংকট)। সে জন্য যারা হাইলি সাসপেক্টেটেড, তাদের ডেডবডি রেখে স্যাম্পল নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।" কর্তৃপক্ষ বলছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সব মিলিয়ে ১২টি মৃতদেহ রাখার ব্যবস্থা আছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছয়তলা বিশিষ্ট পুরনো বার্ন ইউনিট ভবনকে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার জন্য ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এখানে ২৫০ টি শয্যা রয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, বর্তমানে এখানে ১৫০ জনের মতো রোগী ভর্তি রয়েছে। হাসপাতালের পরিচালক জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং সন্দেহভাজন - উভয় ধরণের রোগীদের এখানে রাখা হচ্ছে। যাদের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়া গেছে তাদের জন্য ভবনটির ৫ম তলা এবং সন্দেহভাজন রোগীদের জন্য ৩য় ও ৪র্থ তলা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে দেওয়া সাধারণ ছুটিতে অনেকেই কাজ হারিয়েছে জেনারেল নাসির উদ্দিন বলেন, "উভয় ধরণের রোগীদের এখানে রাখার কারণ হলো, অনেকের করোনার মতো উপসর্গ আছে। তারা অন্য কোন হাসপাতালে চিকিৎসা পাচ্ছেন না। হৃদরোগ হলে শ্বাসকষ্ট হয়, কিডনি রোগী অ্যাডভান্সড স্টেজে থাকলেও শ্বাসকষ্ট হয়।" "এ ধরণের যত রোগী আছে - যাদের জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট আছে - আমরা সবাইকে নেয়ার চেষ্টা করছি। ঢাকা শহরের ক্রিটিকাল রোগীদের একটি বড় অংশ যখন এখানে এসে যাচ্ছে, আমরা তাদের টেস্ট করারও সুযোগ পাই নাই।" বাস্তবতা হলো, হাসপাতাল কিংবা হাসপাতালের বাইরে - করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে যারা মারা যাচ্ছেন, তাদের একটা বড় অংশেরই নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে না। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ঘটনা সেটিই প্রমাণ করছে বলেই মনে হচ্ছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: বাংলাদেশে মসজিদে নামাজের বিধিনিষেধ যেসব শর্তে তুলে দেয়া হচ্ছে করোনাভাইরাস: বাংলাদেশে সংক্রমণ চূড়ায় পৌঁছাবে কবে? কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফল পেতে দেরি হলে যেসব ঝুঁকি তৈরি হতে পারে 'লকড���উনে' কি মধ্যবিত্তের সঞ্চয়ে হাত পড়ছে? করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের যে বিশেষ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে, কেবলমাত্র সেই ওয়ার্ডেই গত চার দিনে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে। +text: ইন্দোনেশিয়ায় আচের ক্যাম্পে উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা অভিবাসন প্রত্যাশীরা ঝুঁকি নিয়ে অভিবাসনের আশায় আন্দামান সাগর পাড়ি দিচ্ছে হাজার হাজার যেসব মানুষ তাদের বেশিরভাগই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি এবং বাকিরা বাংলাদেশি। এই বৈঠকে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সহকারী হাইকমিশনার ভল্কার টার্ক মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের দুরাবস্থা সম্পর্কে অভিযোগ তুলে বলেন মিয়ানমার সরকারকে তার দেশের সব জনগণের পূর্ণ দায়িত্ব নিতে হবে। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের সেদেশের নাগরিক হিসাবে স্বীকার করে না। কিন্তু জাতিসংঘের এই অভিযোগের জবাবে মিয়ানমারের প্রতিনিধি তিন্ লিন্ বলেন এর দায়িত্ব শুধু মিয়ানমারের একার নয়- ''শুধু মিয়ানমারের দিকে আঙুল তুললে চলবে না- এখানে মূল সমস্যা মানব পাচারের।'' বিপদের ঝুঁকি নিয়ে আন্দামান সাগরে পাড়ি জমাচ্ছেন হাজার হাজার রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি বৈঠক থেকে বিবিসির সংবাদদাতা জনাথান হেড জানাচ্ছেন থাই কর্তৃপক্ষ মানবপাচার চক্রগুলোর কর্মকান্ড কঠোর হাতে দমন করার উদ্যোগ নেওয়ার পর আন্দামান সাগরে ভাসমান হাজার হাজার অভিবাসন প্রত্যাশীর সঙ্কটের চিত্র প্রকাশ পায় এবং এই পটভূমিতে দুই সপ্তাহ আগে থাইল্যান্ড এই সঙ্কট নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠক ডাকে। বৈঠকে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেনারেল তানাাসাক্‌ পাতিমাপ্রাগর্ন বলেন মিয়ানমারে নির্যাতন এড়াতে রোহিঙ্গারা এবং দারিদ্র থেকে পালাতে মরীয়া বাংলাদেশিরা যে বিপদসঙ্কুল পথে অভিবাসনের দিকে ঝুঁকছে তার মূল কারণগুলো সমাধানে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা চেয়েছেন। জেনারেল তানাসাক বলেছেন এই সঙ্কট কোনো একটা দেশের পক্ষে একা সমাধান করা সম্ভব নয় এবং মানব পাচার বন্ধ করতে একটা সম্বন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। এশিয়ার অভিবাসন সঙ্কট নিয়ে আলোচনার জন্য থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককে সতেরটি দেশের প্রতিনিধিরা বৈঠক করছেন। +text: আওয়ামী লীগের প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগে এই প্রতিষ্ঠানটি তার এক প্রতিবেদনে বলেছে, আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোন দলের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনাকে ভারতে অনেকে উদ্বেগের সঙ্গে দেখেন। ভারতীয় গবেষকরা আরো বলছেন, এই নির্বাচন আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারে। আবার বলা হয়েছে, নির্বাচনকে 'বিশ্বাসযোগ্য' করাই হবে বড় চ্যালেঞ্জ। এর প্রতিক্রিয়ায় বিরোধী দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলছেন, তাদের বিশ্বাস জনগণের মনোভাব বিবেচনায় নিয়ে ভারতীয় নীতিনির্ধারকরা বরং তাদের অবস্থান পরিবর্তন করছেন। তা না হলে দু'দেশের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। "তাদের যদি নিরপেক্ষতার অভাব থাকে তাহলে দু'দেশের সম্পর্কের উন্নয়ন হবে না। এদেশের মানুষের প্রতি যদি ভারতীয় নীতিনির্ধারকদের শ্রদ্ধা না থাকে তাহলে সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।" তিনি বলেন, "যে দল বা গোষ্ঠী মানুষের কাছে অগ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে তাদের ওপর আস্থা রেখে যদি ভারত এগুতে চায় তাহলে দু'দেশের সম্পর্ক ক্ষতির দিকে যাবে।" বাংলাদেশে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। কিন্তু আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, বিএনপি আমলের কথা বিবেচনায় নিলে প্রতিবেশী দেশের তরফ থেকে এধরনে চিন্তা ভাবনা আসাটা অমূলক কিছু নয়। তিনি বলেন, "বিএনপি আমলে বাংলাদেশে উগ্র মৌলবাদের উত্থান ঘটেছিলো ও বিশেষ করে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদদ দেয়ার অভিযোগ উঠেছিলো। স্বাভাবিক ভাবেই প্রতিবেশী রাষ্ট্রে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও উগ্র মৌলবাদীদের বিস্তার হলে তার প্রভাব প্রতিবেশীদের ওপর পড়বেই। সেটি বিবেচনায় নিয়ে কেউ উদ্বেগ প্রকাশ করলে সেটা অমূলক নয়।" তবে ওই বিশ্লেষণে বাংলাদেশে সংসদীয় রাজনৈতিক দল দুর্বল হয়ে ইসলামী গোষ্ঠীর শক্তিশালী হয়ে ওঠা কিংবা পরিস্থিতি খারাপ হলে ফিরে আসতে পারে সেনা শাসনও-এমন যেসব আশংকার কথা বলা হয়েছে তার সঙ্গে একমত নন আওয়ামী লীগের এই নেতা। আরো পড়তে পারেন: প্রিন্স চার্লসকে কমনওয়েলথের নেতা নির্বাচিত করার আহবান ভারতে লোকেরা টয়লেটে যায় না কেন? মাঝ-আকাশে জানালা ভেঙে যাওয়ার পর কি হয়েছিল বিমানের? বৌদ্ধ পর্যটকরা বাংলাদেশে আসছে না কেন বাংলাদেশের প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কী রয়েছে? বিএনপির প্রধান খালেদা জিয়া ওআরএফের বিশ্লেষণে ��িএনপির আমলে ইসলামী জঙ্গিবাদ শেকড় গেড়েছিল এবং ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা প্রশ্রয় পেয়েছিলো- এধরনের মন্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন বিএনপির নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ওই সময়েই এগুলোর বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয়া হয়েছিলো। তবে সিনিয়র সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলছেন, পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভারত নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন হতেই পারে। তিনি বলেন, "আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে যেসব দুর্বলতা তৈরি হয়েছে তা থেকে নির্বাচনের ফল কোন দিকে যাবে, ফল কেমন হবে, নির্বাচন না হলে তৃতীয় শক্তির উত্থান হবে কি-না তা নিয়ে ভারত চিন্তা করতেই পারে।" মিস্টার আহমেদ বলছেন, ভারত বাংলাদেশকে তার প্রভাব বলয়ে রাখতে চায় আর এই প্রভাব বলয়ে রাখার যে চেষ্টা তার অন্যতম কারণ হলো আঞ্চলিক রাজনীতি- যেটি ওআরএফের বিশ্লেষণেও উঠে এসেছে-যেখানে বলা হয়েছে ভারত যদিও বাংলাদেশের বহু বছরের মিত্র, এখন চীন সেখানে ভারতের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ভারতের একটি প্রভাবশালী গবেষণা প্রতিষ্ঠান অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করার পর বিএনপির এক নেতা বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের প্রতি যদি ভারতীয় নীতিনির্ধারকদের শ্রদ্ধা না থাকে তাহলে দুটো দেশের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। +text: ওভাল অফিসে জো বাইডেন শপথ নেয়ার পর হোয়াইট হাউসে যাওয়ার সময় তিনি টুইটে বলেন, "আমাদের সামনে যে সংকট রয়েছে সেটি সামাল দিতে অপচয় করার মতো কোন সময় নেই।" করোনাভাইরাস সংকট মোকাবেলায় কেন্দ্রীয় পদক্ষেপ জোরদারসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ১৫টি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। অন্য নির্বাহী আদেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তন এবং অভিবাসন বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থানকে ঠিক উল্টে দিয়েছে। বুধবার সকালের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পর মি. বাইডেন ওভাল অফিসে কাজ করার জন্য প্রস্তুত। করোনাভাইরাসের নিষেধাজ্ঞার কারণে শপথ অনুষ্ঠান বেশ আলাদা হয়েছে। শপথ ও অন্য অনুষ্ঠানে মাত্র হাতে গোনা কয়েক জন উপস্থিত ছিলেন। প্রধান বিচারপতি জন রবার্টসের কাছে শপথ নেয়ার পর প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, "গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।" ট্রাম্প শাসনের অশান্ত বছরগুলোর পর একতার বার্তা দি���়ে দেয়া বক্তব্যে তিনি "সব আমেরিকানদের"- এমনকি যারা তাকে ভোট দেয়নি তাদেরও প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তার তিন জন পূর্বসূরি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন: বারাক ওবামা- যার অধীনে আট বছর ভাইস-প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন মি. বাইডেন, বিল ক্লিনটন এবং জর্জ ডাব্লিউ বুশ এবং মি. ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সও উপস্থিত ছিলেন। মি. বাইডেনের আগে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন কমালা হ্যারিস। এই পদে দায়িত্ব নেয়া প্রথম নারী এবং প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ও এশিয়ান-আমেরিকান ব্যক্তিও তিনি। গত ৬ই জানুয়ারি ট্রাম্পের সহিংস সমর্থকরা ক্যাপিটল ভবনের দখল নেয়ার ঘটনার পর অনুষ্ঠানকে ঘিরে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। মি. বাইডেন এবং ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন, মিস হারিস ও তার স্বামী ডো এমহফের সালে পেনসিলভেনিয়া এভিনিউ দিয়ে হেটে হোয়াইট হাউসে পৌঁছান। সেসময় বন্ধু এবং সমর্থকদের শুভেচ্ছা জানান তারা। পেনসিলভেনিয়া এভিনিউ হয়ে হেঁটে হোয়াইট হাউসে যান প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি। শপথ অনুষ্ঠানে লেডি গাগা জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। সেই সাথে ছিলন জেনিফার লোপেজ এবং গার্থ ব্রুকস। আমেরিকার প্রথম ন্যাশনাল ইয়ুথ পয়েট লরেট অ্যামান্ডা গোরম্যান তার লেখা দ্য হিল উই ক্লাইম্ব নামে কবিতাটি আবৃত্তি করেন। আরো পড়ুন: লিংকন মেমোরিয়ালে সন্ধ্যায় আয়োজিত এক কনসার্টে উপস্থাপক হিসেবে ছিলেন টম হ্যাংকস, ব্রুস স্প্রিংস্টিন, জন লিজেন্ড, জন বন জোভি, জাস্টিন টিম্বারলেক এবং ডেমি লোভাটো। বাইডেন কী কী নির্বাহী আদেশে সই করেছেন? নির্বাহী আদেশের বর্ণনা করে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট বাইডেন "শুধু ট্রাম্প প্রশাসনের সবচেয়ে বড় ক্ষতিগুলোই সংশোধন করবেন না বরং তিনি দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।" করোনাভাইরাস মহামারি সামাল দিতে ধারাবাহিক কিছু পদক্ষেপ নেয়া হবে। এতে এখনো পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে চার লাখেরও বেশি প্রাণহানি হয়েছে। সব ধরণের কেন্দ্রীয় সরকারি দপ্তরে মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বাধ্যতামূলক করা হবে। মহামারির বিষয়ে পদক্ষেপের সমন্বয় করতে একটি আলাদা দপ্তর গড়ে তোলা হবে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে যেতে ট্রাম্প প্রশাসনের শুরু করা প্রক্রিয়া স্থগিত করা হবে। ক্ষমতায় যাওয়ার ১০০ দিনের মধ্যে ১০০ মিলিয়ন আমেরিকানকে টিকা দিতে চান মি. বাইডেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এর সাথে আবারো যুক্ত হওয়ার পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তার মুখপাত্র স্টিফানি দুজারিক জানান, মহাসচিব বলেছেন যে, সমন্বিত বৈশ্বিক পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে এটি "অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ"। মি. বাইডেন আরো জানিয়েছেন যে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই হবে তার প্রশাসনের অন্যতম অগ্রাধিকার। ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তিতে আবার যোগ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে নির্বাহী আদেশ সই করেছেন তিনি। গত বছর আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তি থেকে বের হয়ে এসেছিলেন ট্রাম্প। বিতর্কিত কিস্টোন এক্সএল পাইপলাইনের প্রেসিডেন্সিয়াল অনুমোদন বাতিল করেছেন মি. বাইডেন। এই পাইপলাইনের বিরুদ্ধে পরিবেশবাদী এবং নেটিভ আমেরিকান গোষ্ঠীগুলো এক দশকের বেশি সময় ধরে লড়াই করে আসছে। কিস্টোন পাইপলাইনের বিরুদ্ধে পরিবেশবাদী এবং নেটিভ আমেরিকান গোষ্ঠীগুলো এক দশকের বেশি সময় ধরে লড়াই করে আসছে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেন, শুক্রবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে প্রথম বিশ্বনেতা হিসেবে ফোন করার পর এ বিষয়ে তার সাথে আলোচনা করবেন মি. বাইডেন। বেসরকারিভাবে অর্থায়নে থাকা পাইপলাইনটির মূল্য প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার। কোম্পানিটি কানাডার আলবার্টা থেকে নেব্রাস্কায় দৈনিক আট লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল পরিবহন করতো। ২০১৫ সালে এই পাইপলাইন কোম্পানিটির প্রতিষ্ঠায় আনা একটি বিলে ভেটো দিয়েছিলেন বারাক ওবামা। কিন্তু সেটি উল্টে দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। অভিবাসনের উপর ট্রাম্প প্রশাসনের জারি করা জরুরি প্রস্তাবনা বাতিল করেছেন মি. বাইডেন। এই জরুরি প্রস্তাবনার অধীনে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে অর্থায়ন এবং বেশ কয়েকটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। অন্য নির্বাহী আদেশগুলো বর্ণ এবং লৈঙ্গিক সমতা বিষয়ক। হোয়াইট হাউসের নতুন প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি। বাইডেন প্রেসিডেন্সির আওতায় প্রথম অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, তিনি কি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের স্বার্থকে প্রচার করবেন নাকি "সাদামাটা সত্য" উপস্থাপন করবেন। এর উত্তরে তিনি বলেন, "মুক্ত ও স্বাধীন ��ংবাদ মাধ্যমের ভূমিকার প্রতি গভীর শ্রদ্ধার" সাথে তিনি "সরকারে স্বচ্ছতা এবং সত্য ফিরিয়ে আনতে" প্রেসিডেন্টের সাথে কাজ করবেন। শপথ নেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের কিছু উল্লেখযোগ্য নীতি পাল্টে দেয়ার কাজ শুরু করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। +text: ইউনূস সেন্টার বলছে পুলিশ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না দেওয়ায় তারা সম্মেলন বাতিল করেছেন। ঢাকার কাছে সাভারের জিরাবোয় আগামীকাল থেকে 'সামাজিক ব্যবসা' শীর্ষক দুদিন ব্যাপী এই সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা ছিল। ইউনূস সেন্টারের কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ ওসমানি বিবিসি বাংলাকে বলেছেন পুলিশের কাছ থেকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না পাওয়ায় তারা সম্মেলন বাতিল করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন সম্মেলনে যোগ দিতে বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশ থেকে আড়াইশো অতিথি ইতিমধ্যেই ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। এদের মধ্যে জাতিসংঘের একজন সহকারী মহাসচিবও রয়েছেন। সামাজিক ব্যবসা সংক্রান্ত অন্যতম বৃহৎ এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনটি সপ্তমবারের মতো অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। মিঃ ওসমানি বলেছেন অন্যান্য বছরের মত তারা সম্মেলন অনুষ্ঠানের কথা জানিয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও র‍্যাবের কাছে দরখাস্ত জমা দিয়েছিলেন ১৯ এবং ২০শে জুলাই এবং আশা করেছিলেন যথাসময়ে তাদের সম্মেলন অনুষ্ঠানে কোন অসুবিধা হবে না। পুলিশ সদর দপ্তরের গণমাধ্যম বিভাগের সহকারি মহাপরিদর্শক সহেলি ফেরদৌস বিবিসি বাংলাকে বলছেন, এটা একটা আন্তর্জাতিক সম্মেলন, যেখানে দেশবিদেশের অনেক অতিথি আসবেন। কিন্তু ইউনূস সেন্টার থেকে যে সময়ে আবেদনটি জানানো হয়েছে, তাতে তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা, খোঁজখবর নেয়ার মতো সময় তাদের হাতে ছিল না। তিনি বলেন, যেহেতু নিরাপত্তা দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত সময় আমাদের নেই, তাই তাদের কাছে সময় চাওয়া হয়েছে। এছাড়া এ ধরনের অনুষ্ঠানের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অনুমতির দরকার আছে। সেরকম কোন কাগজপত্রও তারা দেয়নি। এসব কারণে তাদের সময় নিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজন করতে বলা হয়েছে। মিঃ ওসমানি বলেছেন যেহেতু অনেক প্রতিনিধি সম্মেলনে যোগদানের জন্য চলে এসেছেন তাদের মধ্যে যারা ইতিমধ্যেই যোগদানের জন্য রেজ্রিস্ট্রেশন করেছেন তাদের লাইভ স্ট্রিমিং-এর মাধ্যমে তাদের বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ তারা দেবেন। ইউনূস সেন্টারের প্রধান, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রত��� বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের উষ্মা নানা সময়ে প্রকাশ পেয়েছে। সংসদেও এ বিষয়ে তিনি বক্তব্য দিয়েছেন। তবে তার সঙ্গে এই ঘটনার কোন সম্পর্ক আছে কীনা এনিয়ে মিঃ ওসমানি কোন মন্তব্য করতে চান নি। তিনি বলেছেন ইউনূস সেন্টারের উদ্যোগে বার্ষিক এই অনুষ্ঠানে সামাজিক ব্যবসা আর উন্নয়নের নানা বিষয় নিয়ে তারা কথাবার্তা বলবেন। বাংলাদেশে পুলিশ নিরাপত্তা দিতে অস্বীকার করায় ড: মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত ইউনূস সেন্টার বলছে তারা তাদের 'স্যোশাল বিজনেস ডে' সম্মেলন বাতিল করেছে । +text: আগামী চার মাসের মধ্যে মামলার প্রক্রিয়া শেষ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মেক্সিকোর কঠোর সুরক্ষাবেষ্টিত কারাগার থেকে দুইবার পালিয়ে গেয়েছিলেন তিনি। গত কুড়ি বছর যাবৎ তিনি মার্কিন মুলুকে 'মোস্ট ওয়ান্টেড' তালিকায় রয়েছেন। শিকাগোর ক্রাইম কমিশন তাকে 'জনশত্রু' উপাধি দিয়েছে। দুই বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রত্যার্পন করার পর তাকে মেক্সিকোর কুখ্যাত অপরাধ সাম্রাজ্য সিনাওলা গোত্রের নেতৃত্ব দেয়া এবং ১৪শত কোটি মার্কিন ডলার অর্থমূল্যের মাদক পাচারের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন তিনি। কৌঁসুলিদের বিশ্বাস, ৬১ বছর বয়েসী এই মাদক সম্রাটকে বাকি জীবন কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টিত কারাগারের ভেতরে রাখার জন্য যথেষ্ঠ প্রমাণ তাদের হাতে রয়েছে। মেক্সিকোর স্থানীয় ভাষায় এল চ্যাপো নামের অর্থ ছোটখাটো। এই ছোটখাটো মানুষটির বিরুদ্ধে মাদক পাচার, অস্ত্র ও অর্থ পাচারসহ মোট ১১টি অভিযোগ আনা হয়েছে। কিন্তু এখনো তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি। আরো পড়তে পারেন: ৭৫-এর নভেম্বর: ইতিহাসের উত্তাল ও রক্তাক্ত দিনগুলো বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না হৃদয়ের বাংলাদেশে মি-টু? মডেল প্রিয়তির অভিযোগে ফেসবুকে আলোড়ন খালেদা জিয়ার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্তহীন ঐক্যফ্রন্ট মামলার বিচারকাজ শুরুর আগে আদালতে কঠোর নিরাপত্তা নেয়া হয়। আগামী চার মাস এই মামলা চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সোমবার মামলার জুরি নির্বাচন করা হয়েছে, এবং আগামী ১৩ই নভেম্বর মামলার যুক্তিতর্ক শুরু হবে। কিন্তু এল চ্যাপোর এই মামলা অন্য যেকোন মামলার চেয়ে আলাদা। কোথায় ভিন্নতা এই মামলার? ১. অর্থের পরিমাণ কৌঁসুলিরা এল চ্যাপোর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ এনেছেন এবং তার ১৪শত কোটি মার্কিন ডলারের সম্পদ বাজেয়াপ্�� করার অবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ মনে করেন, তার সম্পদের মধ্যে এল চ্যাপোর কার্টেল বা সাম্রাজ্য চালানোর খরচ অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ২০০৯ সালে তার সম্পদের পরিমাণ হিসেব করে ফোবর্স ম্যাগাজিন দেখিয়েছিল সিনাওলা কার্টেল থেকে বছরে তিনশো কোটি ডলারের বেশি আয় করেন তিনি। ২০১৬ সালে অভিনেতা শ্যন পেনের সঙ্গে সাক্ষাতের পরই তৃতীয়বারের মত গ্রেপ্তার হন এল চ্যাপো। সেসময় মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকা হোরোইন, কোকেন, মারিজুয়ানা, এবং মেথামফেটামিনসহ সব ধরণের মাদকে ন্যূনতম ২৫ শতাংশ এল চ্যাপোর হাত ধরে হত বলে ফোবর্সের অনুমান। ২. অভিযোগসমূহ যুক্তরাষ্ট্রের মাদক মামলার ইতিহাসে এই মামলাকে বলা হচ্ছে সবেচয়ে বড় মামলা। কৌসুলিরা প্রমান হিসেবে হাজার হাজার পৃষ্ঠার দলিল, ছবি এবং সোয়া এক লক্ষ অডিও রেকর্ডিং আদালতে হাজির করতে যাচ্ছেন। এল চ্যাপোর বিরুদ্ধে ৩৩টি হত্যা মামলাও রয়েছে। বারবার এই মামলার শুনানি পিছিয়েছে। স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এল চ্যাপোকে নিয়ে রয়েছে ব্যাপক আগ্রহ। ৩. নিরাপত্তা এর আগে কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টিত কারাগার থেকে দুইবার পালিয়ে গিয়েছিলেন এল চ্যাপো। যে কারণে তার নিরাপত্তা নিয়ে কর্তৃপক্ষ ভীষণ উদ্বিগ্ন। আদালতে শুনানি কাজ চলার সময় ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাড়তি নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যার্পনের পর থেকে তাকে ম্যানহাটানের সবোর্চ্চ নিরাপত্তা বেষ্টিত কারাগারের বিশেষ সেলে দিনে ২৩ ঘন্টা করে রাখা হয়। ব্রুকলিনে শুনানি শুরু হবার আগে যখন তাকে আদালতে আনা হত, তখন নিউ ইয়র্কের বিখ্যাত সেতুটির দুই প্রান্ত বন্ধ করে রাখা হয়। সোয়াট টিম মোতায়েন করা হত, সাথে থাকত অ্যাম্বুলেন্স আর পুরো পথ পাহারা দিত কয়েকটি হেলিকপ্টার। আদালতে আনার সময় নিউ ইয়র্কে এল চ্যাপোকে বহনকারী নিরাপত্তা বহর। ৪. মামলা নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ এই মামলাটি নিয়ে জনগনের মধ্যে ব্যপক আগ্রহ রয়েছে। বিচারকেরা বলছেন, এটি একটি নজিরবিহীন মামলা। এল চ্যাপোকে নিয়ে ইতিমধ্যেই চলচ্চিত্র প্রযোজক এবং অভিনেতাদের মধ্যেও আগ্রহ রয়েছে। অভিনেতা শ্যন পেন ২০১৬ সালে রোলিং স্টোন ম্যাগাজিনের হয়ে মাদক সম্রাটের সাক্ষাৎকার নিতে গিয়েছিলেন, যদিও তিনি জানতেন না তদন্তকারীরা তার সূত্র ধরে এল চ্যাপোর কার্টেলের বিস্তারিত ���ানতে চান। তার সঙ্গে সাক্ষাতের পরপরই তৃতীয়বারের মত গ্রেপ্তার হয়েছিলেন এল চ্যাপো। এল চ্যাপোর অর্থ সম্পদের পরমিাণ নিয়ে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন মত। মেক্সিকোর মাদ্রক সম্রাট জোয়াকুইন 'এল চ্যাপো' গুজমানকে শেষ পর্যন্ত যখন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রত্যার্পন করা হয়, ততদিনে তিনি 'আধুনিক সময়ের সবচেয়ে কুখ্যাত অপরাধী' হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছেন। +text: নাজিব রাযাকের সাথে সংশ্লিষ্ট বাড়িগুলো থেকে পাওয়া অলংকার ওয়ানএমডিবি নামের একটি রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ তহবিলের দুর্নীতির তদন্তের অংশ হিসেবে এগুলো পাওয়া যায়। এতে রয়েছে ১৬ লাখ ডলার দামের স্বর্ণ এবং হীরার নেকলেস, ১৪টি টিয়ারা এবং ২৭২টি হারমিস ব্যাগ। নাজিব রাযাকের ওই বিনিয়োগ তহবিলের শত শত কোটি ডলারের কোন হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না। মে মাসে নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে। পুলিশ বলছে, মালয়েশিয়ার ইতিহাসে একবারে এত বিপুল পরিমাণ মূল্যবান সামগ্রী কখনো বাজেয়াপ্ত হয় নি। পুলিশ কর্মকর্তা অমর সিং বলেন, এত বিপুল পরিমাণ সামগ্রী আগে কখনো বাজেয়াপ্ত করা হয় নি। এসব সামগ্রীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল অলংকার। সবচেয়ে দামী অলংকারটি ছিল ১৬ লাখ ডলার দামের একটি নেকলেস। আরো পাওয়া গেছে ৫৬৭টি হ্যান্ডব্যাগ - যার মধ্যে ছিল নগদ প্রায় ৩ কোটি ডলার। আরো ছিল ৪২৩টি ঘড়ি, ২৩৪টি সানগ্লাস। পুলিশ কর্মকর্তা অমর সিং বলেছেন, এত সামগ্রী পাওয়া গেছে যে তাদের তা গুণতে এবং মূল্য হিসেব করতে পাঁচ সপ্তাহ লেগেছে। নাজিব রাযাক ও তার স্ত্রী রোজমা নাজিব রাযাকের স্ত্রী রোজমার পরিচিত তৈরি হয়েছিল তার শপিং-প্রীতিএবং দামী ব্রান্ডের জিনিসের প্রতি আকর্ষণের জন্য। তাকে ফিলিপিনের সাবেক ফার্স্ট লেডি ইমেলদা মার্কোসের সাথেও তুলনা করা হতো - যিনি তার বিলাসদ্রব্য এবং জুতোর প্রতি আসক্তির জন্য বিখ্যাত ছিলেন। দুর্নীতির অভিযোগে বলা হয় যে মি. নাজিব ওয়ানএমডিবি থেকে ৭০ কোটি ডলারআত্মসাৎ করেছেন, যে অভিযোগ তিনি সবসমই অস্বীকার করেছেন। মে মাসের নির্বাচনের মি, নাজিবের পরাজয়ের পেছনে দুর্নীতির অভিযোগ এক বড় কারণ ছিল বলে মনে করা হয়। নির্বাচনে জয়ী হন তারই সাবেক মিত্র মাহাথির মোহাম্মদ। নির্বাচনের পর মি. নাজিবকে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে,এবং তার দেশের বাইরে যাওয়াও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাযাক এবং তার স্ত্রী রোজমা মানসোরের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বাড়ি থেকে পাওয়া প্রায় ২৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার দামের অলংকার, নগদ টাকা এবং হাতব্যাগ বাজেয়াপ্ত করেছে সেদেশের পুলিশ । +text: ওবায়দুল কাদের ভারতের প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠি মি: কাদেরকে হাসপাতালে দেখার পরেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দেবী শেঠি মি: কাদেরকে দেখার কিছুক্ষন পরেই অ্যাম্বুলেন্সে করে বিমানবন্দরের দিকে রওনা হয়। সেখান তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়ার জন্য গতকাল থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত ছিল। আজ ঢাকায় এসে দেবী শেঠি বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে দেখতে যান। সেখানে গিয়ে তিনি মি: কাদেরকে দেখেন এবং সব কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। এরপর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া এবং সে হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। তবে সে সংবাদ সম্মেলনে ডা. দেবী শেঠি উপস্থিত ছিলেন না। ডা. দেবী শেঠিকে উদ্ধৃত করে মি; বড়ুয়া বলেন, ঢাকার হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা যা করেছে সেটি খুবই চমৎকার। "মিসেস ওবায়দুল কাদের ছিলেন সেখানে। তিনি বলেন, ইওর হাজব্যান্ড ইজ লাকি (আপনার স্বামী সৌভাগ্যবান)।... ইউরোপ-আমেরিকাতেও এর চেয়ে বেশি কিছু করার নাই। " দেবী শেঠিকে বাংলাদেশে আনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন বলে জানান বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া। দুপুর একটার দিকে দেবী শেঠি ঢাকায় এসে পৌঁছেন। ডিসেম্বরেও একবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল ওবায়দুল কাদেরের বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেছেন, ওবায়দুল কাদেরের ডায়াবেটিস ছিল অনিয়ন্ত্রিত। মি: কাদেরের এর আগেও হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল বলে জানান ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। "ওনাকে স্ট্যান্টিং করার জন্য আগেও পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। গত ২০ ডিসেম্বর আমার এখানে আসার পর আমি একটা মেডিকেল বোর্ড করে ওনাকে পরামর্শ দেই। আমার মেডিকেল বোর্ড বলেছে, আপনি এখানে ভর্তিই থাকেন। কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই ইলেকশন ৩০ তারিখে। উনি বললেন যে ইলেকশনের পর পরেই এসে উনি ভর্তি হবেন," সংবাদ সম্মেলনে বলেন মি: বড়ুয়া। " তারপরেও ওনার সাথে দেখা হলে ওনাকে রিকোয়েস্ট ��রেছিলাম আমরা। কিন্তু উনি বলছেন, আমি তো ভালো আছি, সুস্থ আছি। ঠিক আছে একসময় আসবো।" মি: কাদেরের ফুসফুসেও সমস্যা রয়েছে বলে উপাচার্য মি: বড়ুয়া। আরো পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক: যে বিষয়গুলো কখনো উপেক্ষা করবেন না ওবায়দুল কাদের ‘সম্পূর্ণভাবে চেতনা ফিরে পেয়েছেন’ কাদের চোখ খুলেছেন, তবে পুরোপুরি শঙ্কা মুক্ত নন রোববার ভোরে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এই নেতা এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। এরপর সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসা দিতে দিতেই তার একটি হার্ট অ্যাটাক হয়। তারপর এনজিওগ্রাম করে দেখা যায়, তার হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক রয়েছে, যার একটিতে স্টেন্টিং করে দেয়া হয়। তাঁর হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়েছে। চিকিৎসকেরা গতকাল জরুরী ভিত্তিতে একটি অপসারণ করেছেন। এখন আরো দুইটি ব্লক রয়েছে বলে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছে। চিকিৎসকেরা বলেছেন, ব্লকগুলো সম্পূর্ণ অপসারণের জন্য বড় অপারেশনের দিকে যেতে হতে পারে। মি. কাদের ২০১৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০ তম জাতীয় সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ভারতের প্রখ্যাত হৃদরোগ চিকিৎসক ডা. দেবী শেঠির পরামর্শে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। +text: সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালের জুলাই মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান জানিয়েছেন, আগামী ১১ই মার্চ ডাকসু কেন্দ্রীয় সংসদ এবং হল সংসদগুলোর নির্বাচন এক যোগে অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলবে। ১৯৭৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ, অর্থাৎ যে অধ্যাদেশের মাধ্যমে পরিচালিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, তাতে ডাকসুর সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। সে ক্ষমতাবলে নির্বাচনের দিন ঠিক করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এর আগে ১৬ই সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে জানিয়েছিল ২০১৯ সালের মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে ডাকসুর নির্বাচন। আরো পড়ুন: ডাকসু নির্বাচন কি আসলেই করতে চায় কর্তৃপক্ষ? ডাকসু নির্বাচনের পরিবেশ কতোটা আছে ক্যাম্পাসে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সে ঘোষণা দিয়েছিল উচ্চ আদ��লতের এক রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে। ঐ রায়ে ছয় মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন করার ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ ছিল। সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯০ সালের জুলাই মাসে। স্বাধীন বাংলাদেশে এ পর্যন্ত মোট সাতবার অনুষ্ঠিত হয়েছে ডাকসু নির্বাচন। তবে ডাকসু নির্বাচনের জন্য সব ছাত্র সংগঠনের ক্যাম্পাসে নির্বিঘ্নে সহাবস্থানকে সবচেয়ে বড় পূর্বশর্ত বলে মনে করা হয়। অধ্যাপক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান দাবি করেছেন, সব ছাত্র সংগঠনের শিক্ষার্থীরাই হলে থাকতে পারছে এবং বাধা ছাড়াই ক্লাস করতে পারছে। তবে, কেউ যদি বাধার মুখে পড়ে, অভিযোগ জানালে সেটা সমাধান করা হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য। তিনি জানিয়েছেন ডাকসু নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে এরই মধ্যে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে ১৭ই জানুয়ারি প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তাকে সহায়তার জন্য পাঁচজন অধ্যাপককে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ১৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি উপদেষ্টা পরিষদও গঠন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন উপাচার্য। ইতিমধ্যেই গঠন করা হয়েছে একটি 'আচরণবিধি কমিটি'। ২৮ বছরের বেশি সময় পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। +text: একসময় দেশের খাল-বিল-নদীতে এই কুমিরের বসবাস থাকলেও, অন্তত অর্ধ শতাব্দী ধরে কোথাও এই কুমির দেখা যায়নি। খুলনা বিভাগীয় বন দপ্তরের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কর্মকর্তা জাহিদুল কবির বিবিসিকে জানিয়েছেন, ২৩শে অক্টোবর মাগুরার মধুমতি নদীতে কুমিরটি একজনের ওপর চড়াও হয়। পরে গ্রামবাসীরা সেটিকে ধরে স্থানীয় পুলিশের কাছে দিয়ে আসে। কুমিরটিকে এখন সুন্দরবনের করমজল এলাকায় কুমির প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে রাখা হয়েছে। শেষ দেখা যায় ৬২তে জাহিদুল কবির জানান, ১৯৬২ তে শেষবার বাংলাদেশে এই কুমির দেখা গেছে বলে তাদের কাছে রেকর্ড আছে। দু'হাজার সালে বাংলাদেশে এই প্রজাতির কুমির বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। শুধুমাত্র বাগেরহাটের খানজাহান আলীর দরগার দিঘিতে কালা-পাহাড় এবং ধলা-পাহাড় নামে এই প্রজাতির দুটো কুমির ছিল যেগুলোও এখন নেই। ফলে, মি কবির বলেন, এতদিন পর নদীতে এই কুমিরের সন্ধান লাভ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা। তার মতে, ব��লুপ্ত এই প্রজাতিটিকে আবারো সংরক্ষণের একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। মাগুরার মধুমতিতে আটক কুমিরটি পুরুষ। ঐ এলাকায় আরো এরকম কুমির রয়েছে কিনা তা দেখতে বন কর্মকর্তারা খুব শীঘ্রই সেখানে যাবেন। "একটি নারী কুমির পাওয়া গেলে, আলাদা জায়গায় প্রজনন সম্ভব। পরে চলন বিল বা সিলেটের কিছু হাওর সংরক্ষণ করে সেখানে ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে।" বিপজ্জনক প্রাণী? মধুমতি নদীতে পাওয়া এই প্রজাতির কুমির মানুষের জন্য কতটা বিপজ্জনক? এই প্রশ্নে, জাহিদুল কবির বলেন, কাছাকাছি গেলে বা বিরক্ত করলে এগুলো আক্রমণ করতে পারে। একসময় বাংলাদেশের বহু খালে বিলে নদীতে মিঠা পানির কুমির হর-হামেশাই চোখে পড়তো। জাহিদুল কবির জানান, মাছ শিকার বেড়ে যাওয়ায় জালে বেঁধে এগুলো মারা পড়তে থাকে। কালে তা বিলুপ্ত হয়ে যায়। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা মাগুরার মধুমতি নদীতে একটি মিঠা পানির কুমির পাওয়া গেছে। +text: চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হলেন শেখ হাসিনা দেখা যাচ্ছে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠনের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাদ দিয়েছেন বেশ কিছু প্রবীণ নেতাদের। এবারের মন্ত্রী সভায় নেই আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরীর মতো আওয়ামী লীগের বেশ কিছু পুরনো মুখ। বাদ পড়েছেন মোহাম্মদ নাসিম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আসাদুজ্জামান নুর ও মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়ার মতো পুরনো নামও। মনে হচ্ছে যেনও একটি প্রজন্ম একসাথে বাদ পড়লো। শ ম রেজাউল করিম নতুন মন্ত্রীসভার একজন। দায়িত্ব পেয়েছেন গৃহায়ন ও পূর্ত মন্ত্রনালয়ের। এবার প্রথমবারই সংসদ সদস্য হয়েছেন। তিনি বলছেন, "রাজনীতিতে আমি নতুন নই। রাজনীতিতে আমরা অনেক চড়াই উৎরাই রয়েছে। অভিজ্ঞতার ভাণ্ডারও কম সমৃদ্ধ নয়। তবে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আমি নতুন। কিন্তু যেহেতু আমি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পছন্দ করি, তাই কাজ করতে আমার কোন বাধা হবে বলে আমি মনে করি না।" মি. করিম আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক। অর্থাৎ দলে একদম নতুন নন। তবে প্রশাসনে নতুন। কিন্তু যারা বাদ পড়েছেন তাদের ছাড়া দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে ভাবা যায়না। অভিজ্ঞ প্রবীণ নেতাদের বাদ দিয়ে শেখ হাসিনা যে ধরনের মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন তা ঠিক কী বার্তা দিচ্ছে? জিজ্ঞেস করেছিলাম মন্ত্রীসভা থেকে বাদপড়া ���মনই একজন প্রবীণ নেতা, শিল্পমন্ত্রীর পদ থেকে সদ্য বিদায়ী আমির হোসেন আমুর কাছে। তিনি বলছেন, "এত বড় দল, বিভিন্ন স্তরে, পর্যায়ে নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। আমরাতো আর চিরদিন থাকবো না। আমাদের সিনিয়র যারা ছিলেন তারাও তো এখন নেই। আওয়ামী লীগতো ক্ষমতায় আছে। আরও কয়েকবার আসতে পারে। সুতরাং সেই সময় যাতে কিছু অভিজ্ঞ লোক দাড়িয়ে যাতে দাড়িয়ে যায় যারা ভবিষ্যতে সরকার পরিচালনা করতে পারবে। একটা পর্যায়ে তো এদেরই হাল ধরতে হবে। সেই সুযোগটাই বোধ হয় করে দেয়া হলও।" নতুন মন্ত্রিসভায় ২৭জন প্রথম বারের মতো মন্ত্রী হলেন শ ম রেজাউল করিম মনে করেন, "নতুনদের কর্মশক্তি দিয়ে একটি পরিবর্তনের দিকে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মী রয়েছেন যারা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করার জন্য উপযুক্ত। অনেক সিনিয়র নেতৃবৃন্দ দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। কারো কারো বয়স হয়েছে। নতুনদের যদি অভিজ্ঞ করে তোলা না হয়, সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের এই জাতীয় অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোকেরওতো একসময় সংকট হতে পারে।" আরও পড়ুন: চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হলেন শেখ হাসিনা বঙ্গভবনের শপথ অনুষ্ঠানে হাজির-গরহাজির যারা স্থান হয়নি, তবুও মন্ত্রিত্বের আশা ছাড়েনি মহাজোট শরিকরা রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম মনে করেন সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি পরিবর্তনের ইচ্ছের প্রতিফলন ঘটেছে এই মন্ত্রিসভায়। তিনি বলছেন, "একটা জিনিস খেয়াল করুন এই মন্ত্রিসভায় যারা আছেন তারা প্রত্যেকেই শেখ হাসিনার থেকে বয়সে ছোট। দুটো জিনিস খুব পরিষ্কার যে তিনি তরুণদের হাতে মন্ত্রীত্বের অধিকাংশ দিয়ে তিনি একটা নতুন শুরুর চেষ্টা করছেন।" তার মতে, "বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারকে যে সমস্ত উন্নতি করতেই হবে, সেটা ইশতেহার অনুযায়ী হোক আর মানুষের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী হোক, অথবা নির্বাচন যেটা অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে নানা কারণে, এই নির্বাচন যে সরকারের দুর্বলতার প্রতিফলন করে না সেটা প্রমাণ করার জন্যই হোক, অনেক কারণে তাদের উন্নয়নের এবং গতিশীলতার, স্বচ্ছতার, জবাবদিহিতার পরিমাণটা বাড়াতে হবে। সেই কারণে হয়ত এমন নতুন যাত্রার সূচনা।" বাংলাদেশে রাষ্ট্র পরিচালনায় এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রীসভায় থাকছেন ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপমন্ত্রী। যাদের মধ্যে ২৭ জনই মন্ত্রী হিসেবে নতুন মুখ। +text: মিয়ানমারে শেভরনের বড় বিনিয়োগ রয়েছে মিয়ানমারে এই কোম্পনিটির শত শত কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। গত আগস্ট মাস থেকে দেশটিতে চলমান সহিংসতা থেকে বাঁচতে প্রায় ৬ লক্ষ রোহিঙ্গা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, বলছে জাতিসংঘ। গত কয়েক বছর ধরে অন্য বিনিয়োগকারীদের চাপের পর শেভরন বলেছে, তারা এমন একটি বিনিয়োগ পরিবেশের জন্য কাজ করতে চায় যেখানে মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখানো হয়। বিবিসিকে দেয়া এক বিবৃতিতে কোম্পানিটি বলেছে, "মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার মতো জরুরি ব্যাপারটি নিয়ে স্টকহোল্ডারদের সাথে যে সংলাপ চলছে - শেভরন তাকে মূল্য দেয়।" বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে ৬ লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা "আমরা বিশ্বাস করি যে মার্কিন বিনিয়োগ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং উন্নয়নের এক শক্তিশালী হাতিয়ার।" "আমরা অন্য মার্কিন কোম্পানি এবং সরকারের সাথে কাজ করা অব্যাহত রাখবো - যাতে মিয়ানমারে মার্কিন বিনিয়োগের মূল্য এবং মানবাধিকারকে সম্মান করে এমন এক ব্যবসায়িক পরিবেশের প্রসার ঘটানো যায়।" শেভরন এবং বৃহৎ ফরাসী তেল কোম্পানি টোটালের সম্পদ-সমৃদ্ধ রাখাইন প্রদেশে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান প্রকল্প আছে। তা ছাড়া মিয়ানমারের অন্যান্য এলাকাতেও প্রতিষ্ঠিত প্রকল্প আছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন : সৌদি আরব আর ইরানের এই তীব্র শত্রুতার কারণ কি? সাদ হারিরি প্যারিসে তবে 'রাজনৈতিক আশ্রয়ে নয়' রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীন কেন মিয়ানমারের পক্ষ নিয়েছে ? সম্প্রতি উত্তর রাখাইন অঞ্চলে মানবাধিকার লংঘন, ধর্ষণ, গণহত্যা এবং গ্রাম ধ্বংসের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ আছে। দেশটির নির্বাচিত নেতা অংসান সুচিরও এ জন্য সমালোচনা হয়েছে। মিজ সুচি অক্টোবর মাসে বাস্তুচ্যুত শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য একটি জরুরি অর্থনৈতিক কমিটি গঠন করেছেন। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা যদি মিয়ানমারের প্রধানত রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিতজ্বালানি সেক্টরে বিনিয়োগ করতে চায় তাহলে তাদেরকে সেদেশের জাতীয় মিয়ানমা তেল ও গ্যাস এন্টারপ্রাইজ (এম ও জি )-র সাতে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে করতে হয়। শেভরনে বিনিয়োগকারী এবং অধিকারকর্মী জশুয়া ব্রকওয়েল- যিনি আজ্জাদ এ্যাসেট ম্যানেজমেন্টে কাজ করেন - বলছেন এটা এ অঞ্চলে ব্যবসায়িক সম্পদ এবং সুনামের ক্ষেত্রেও ঝুঁকি হতে পারে বলে উদ্বেগ রয়েছে। কা��ণ এ দেশ সম্ভবত জাতিগত শুদ্ধি অভিযানে জড়িত। আজ্জাদ এ্যাসেট ম্যানেজমেন্টই প্রথম বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যারা শেভরনের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল। তার ঠিক আগেই জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা সেপ্টেমবর মাসে বলেন, জাতিগত শুদ্ধি অভিযান বলতে যা বোঝায় ঠিক তাই ঘটছে। আন্তর্জাতিক মনোযোগও তখন এ ঘটনার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। এই ফার্মটি শেভরনকে বলেছে যেন তারা সরকারের ওপর ওই অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। . আজ্জাদ শেভরনের প্রতি মিয়ানমারে 'ব্যবসা না করার' কথা বিবেচনা করতেও আহ্বান জানায়। মার্কিন এই ফার্মটি ৫ হাজার ৩শ কোটি ডলারের সম্পদ পরিচালনা করে -যার মধ্যে শেভরনের অর্থও রয়েছে। আজ্জাদ এ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট মিয়ানমারে শেভরনের ঐতিহাসিক এবং বর্তমান ব্যবসায়িক সংশ্লিষ্টতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে, বলেন মি. ব্রকওয়েল। মিয়ানমারের রাখাইন থেকে গত এক দশকের ও বেশি সময় ধরে লক্ষ লক্ষ লোক পালিয়ে বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরগুলোয় আশ্রয় নিচ্ছে। রাখাইন প্রদেশে দীর্ঘ এবং ক্রমবর্ধমান যুদ্ধের একটি জঙ্গী প্রতিক্রিয়াকেই আগস্ট মাসের ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়। মানবাধিকার সংগঠনগুলো রোহিঙ্গা মুসলিমদের গ্রামে আগুন লাগিয়ে দেয়া সহ তাদের বিরুদ্ধে নানা সহিংসতার বিবরণ বিস্তারিত প্রকাশ করেছে। রাখাইন শরণার্থীদের কাছ থেকে যে ব্যাপক যৌন নির্যাতনের খবর পাওয়া গেছে তার ব্যাপারে জাতিসংঘের সিনিয়র কর্মকর্তা প্রমীলা প্যাটেন বলেন, ধর্ষণ হচ্ছে গণহত্যার একটি অস্ত্র। চীনেরও রাখাইন প্রদেশে বড় আকারের রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ রয়েছে। এর মধ্যে আছে ৭২০ কোটি ডলারের একটি গভীর সমুদ্র বন্দর, এবং গ্যাস পাইপলাইন। ভারতেরও আছে একটি কয়েকশ কোটি ডলারের পরিবহন কাঠামো আছে। রাখাইন অর্থনৈতিক এলাকা মানচিত্রে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ অক্টোবর মাসে রাখাইন অর্থনৈতিক এলাকার জন্য একটি কমিটি গঠনের কথা ঘোষণা করা হয়। এতে রাখাইন রাজ্যের কৃষি ও মৎস্যআহরণ শিল্পের উন্নয়নের কথা বলা হয়। মিয়ানমারের নেতা অং সান সুচি ভালোভাবেই বোঝেন যে রাখাইন রাজ্যে ভয়াবহ ঘটনা ঘটছে, এবং তিনি পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে চান - বিবিসিকে একথা বলেন মিয়ানমারের নেত্রীর বিশেষ অর্থনৈতিক উপদেষ্টা শন টাফনেল। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নে লক্ষ্য হচ্ছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পুনর্বাসন - যারা বাংলাদেশে আছে ��বং অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে তারাও। তবে অর্থনীতিই সব নয়, একথাও বলেন মি. টাফনেল। এই কমিটির প্রথম বৈঠকের কয়েকদিনের মধ্যেই মিজ সুচি আগস্ট মাসের পর প্রথমবারের মতো রাখাইন সফর করেন, এবং তার সাথে ছিলেন বড় ব্যবসায়ীরা। সন্দেহ তবে দু পক্ষেই কাজ করছে সন্দেহ। ফিলিপাইন ভিত্তিক টেনিও ইনটেলিজেন্সের বব হেরেরা-লিম যিনি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ব্যবসার ঝুঁকি বিশ্লেষণ করেন- বলেন, এটা কি শুধু লোককে দেখানোর জন্যই করা হচ্ছে কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে। মিয়ানমারের তেল-গ্যাসের মতো প্রাকৃতিক সম্পদের বড় অংশই আছে এমন জায়গায় যেখানে সহিংসতা চলছে। তাই এখানে সুশাসন এবং মিয়ানমারের সম্পর্কে বাইরের ধারণা উন্নত হতে হবে। এখন পর্যন্ত আমরা দেখিনি যে বড় কোন বিদেশী বিনিয়োগকারী এখান থেকে চলে যাচ্ছে, বলেন মি হেরেরা-লিম। কিন্তু বিদ্যমান প্রকল্পগুলোর সম্প্রসারণ এখন ঝিমিয়ে পড়ছে, বলছেন একজন বিনিয়োগকারী। থুরা কো কোর কোম্পানি ওয়াই জি এ ক্যাপিটাল মিয়ানমারে ১০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। "আমরা দেখতে পাচ্ছি যে মিয়ানমারের জনসংখ্যা বিপণনের বৃদ্ধি এবং টেলিকম বিপ্লব - এদিক থেকে দেশটির দীর্ঘ মেয়াদি সম্ভাবনা আছে।" "তবে রাখাইন পরিস্তিতি নিয়ে প্রচুর রাজনৈতিক কথাবার্তা হচ্ছে আমাদের বিনিয়োগকারীরা যে এ ব্যাপারে সচেতন নন তা ভাবা ঠিক হবে না।" কিছু নতুন গ্যাস অনুসন্ধান প্রকল্প কিছুটা পিছিয়ে গেছে, কিন্তু এর সবটাই হয়তো রাজনৈতিক কারণে নয়। কারণ বৈশ্বিকভাবেই তেল ও গ্যাসের দাম কমে যাওয়ায় পরিস্থিতিটাই এমন। যে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ জাতিগত শুদ্ধি অভিযান চালানোর অভিযোগ এনেছে - তাদের সাথে অংশীদারিত্বের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ তেল কোম্পানি শেভরনের যে সমালোচনা হয়েছে, তার জবাব দিয়েছে কোম্পানিটি। +text: ভেনেজুয়েলা নিয়ে বৈঠক করেছেন ভ্লাদিমির পুতিন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটিকে ঘিরে দুই পরাশক্তির নানা পদক্ষেপে সেখানকার সংকট আরো ঘনীভূত হয়ে উঠেছে। বিরোধী নেতা হুয়ান গুয়াইদোর ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টার পর দুই দেশই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে যে, তারা ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলাচ্ছে। দুই পরাশক্তির টানাটানি ''একটা সময়ে মনে করা হতো যে, ভেনেজুয়েলার সংকট আসলে দুই নেতা মাদুরো আর গুয়াইদোর মধ্যকার একটি বিরোধ। কিন্তু এখন সেটা বরং রাশিয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধ বলেই মনে হচ্ছে,'' বলছেন আমেরিকান থিংক ট্যাংক র‍্যান্ড কর্পোরেশনের বিশ্লেষক জেমস ডোবিন্স। গত ডিসেম্বরে সামরিক মহড়ায় অংশ নিতে দুইটি সুপার সনিক বিমান পাঠায় রাশিয়া, যা মাদুরোর প্রতি তাদের সমর্থনের প্রকাশ বলে মনে করা হয় অনেক পর্যবেক্ষক মনে করেন, এটি যেন দক্ষিণ আমেরিকায় সেই পুরনো স্নায়ুযুদ্ধের সময়ে ফিরে যাওয়ার মতো ব্যাপার, যখন দুই পরাশক্তির বিরোধের কেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছিল কিউবা। কিন্তু কেন ভেনেজুয়েলা নিয়ে এই টানাটানি? এর আসলে কোন সহজ উত্তর নেই। রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিক স্বার্থের ব্যাপারটি এখানে মিলেমিশে দেশটির বর্তমান সংকট তৈরি করেছে। কিভাবে রাশিয়া মাদুরোর বন্ধু হয়ে উঠলো আর যুক্তরাষ্ট্র হয়ে গেল শক্রু? উগো চ্যাভেজের শাসনামলে (১৯৯৯-২০১৩) ওয়াশিংটন এবং কারাকাসের মধ্যে মাঝেমাঝে উত্তেজনা হয়েছে, কিন্তু দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য অব্যাহত ছিল। ''বহু বছর ধরে ভেনেজুয়েলার তেলের প্রধান ক্রেতা ছিল যুক্তরাষ্ট্র এবং অনেক তেল পরিশোধনাগার শুধুমাত্র আমেরিকায় তেল পাঠানোর জন্যই কাজ করতো,'' ব্যাখ্যা করছেন ডোবিন্স। নিকোলা মাদুরোর অভিযোগ ওয়াশিংটন তাকে অপসারণের চেষ্টা করছে কিন্তু ২০১৩ সালে মি. মাদুরো ক্ষমতায় আসার পর দুই দেশের সম্পর্ক নষ্ট হতে থাকে। দেশটির অনেক ব্যক্তি এবং কোম্পানির বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করা হলে সংকট আরো ঘনীভূত হয়। যখন ভেনেজুয়েলা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, তখন রাশিয়া আরো ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করে। রাশিয়ার অনেক আন্তর্জাতিক নীতিতে সমর্থন দিতে শুরু করে ভেনেজুয়েলা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়াকে সংযুক্ত করার পর রাশিয়া যে কোণঠাসা অবস্থায় পড়েছিল, সেটি কাটাতে মস্কো অন্যত্র বন্ধু খোঁজার চেষ্টা শুরু করে। ''মস্কো এখন এমন দেশ খুঁজছে, যারা আগ্রহের সাথে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক করবে, আর এরকম একটি দেশ হলো ভেনেজুয়েলা'' বলছেন ইউক্রেনে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ পিফের, যিনি এখন মার্কিন থিংক ট্যাঙ্ক ব্রকিংস ইন্সটিটিউটে গবেষণা করছেন। ভেনেজুয়েলার তেলখাতে অনেক বিনিয়োগ করেছে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্র যত সরে যেতে শুর করেছে, রাশিয়া ততই ভেনেজুয়েলার সঙ্গে জড়িত হতে শুরু করে। গত এক দশক ধরে রাশিয়ার তেল কোম্পানি রোসনেফ্ট দেশটির তেল খাতে তাদের বিনিয়োগ বাড়িয়েই চলেছে। অনেক বিশেষজ্ঞ ধারণা করেন, ২০০৬ সাল থেকে প্রায় দুই হাজার কোটি ডলার ঋণের বদলে তেল নিয়েছে রোসনেফ্ট ও রাশিয়ার সরকার। ডোবিন্স বলছেন, রাশিয়ার ঋণ পুরোপুরি পরিশোধের ক্ষমতা নেই ভেনেজুয়েলার সরকারের। আর দেশটিতে ক্ষমতার পরিবর্তন মানে হলো তাদের অর্থকড়ি ফেরতের সম্ভাবনা আটকে যাওয়া। সবকিছুই কি তেল কেন্দ্রিক? এটা ভেনেজুয়েলা সরকারের জনপ্রিয় শ্লোগান: মাদুরো বরাবরই যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করে আসছেন যে, তারা দেশটির তেল সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। ডবিন্স বলছেন, ''সন্দেহ নেই যে, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভেনেজুয়েলা বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার এবং সেই সম্পর্ক পুনরায় স্থাপন করতে চাইবে।'' ''কিন্তু আমি এই অভিযোগ মানতে রাজি নই যে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের তেল সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়।'' যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করলেও মস্কো থেকে পাওয়া সমর্থনের প্রশংসা করছে ভেনেজুয়েলার প্রশাসন। ভেনেজুয়েলায় মাঝে মাঝেই সহিংস আন্দোলন ঘটে কলম্বিয়ার রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক গবেষক ভ্লাদিমির রোভিন্সিকি বলছেন, রাশিয়ার কাছে আসলে তেল নয়, ভেনেজুয়েলায় অন্য স্বার্থ রয়েছে। ''২০১৪ সাল থেকে ব্যবসার দিক থেকে রাশিয়ার অনেক বিনিয়োগ ঝুঁকিতে পড়েছে। ভেনেজুয়েলার তেলের খনি থেকে লাভ করতে হলে সেখানে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করতে হবে।'' ''রাশিয়ানরা আসলে মাদুরো সরকারকে সহায়তা করার জন্য এই আবরণ দিয়েছে। কারণ রোসনেফ্টের যেখানে নিজস্ব তেল খনি রয়েছে, সেখানে ভেনেজুয়েলার তেলের পেছনে এতো বেশি অর্থ বিনিয়োগ করার কোন মানে নেই।'' ডবিন্সও বলছেন, আমেরিকান তেল আর গ্যাস শিল্প আমদানির ওপর কমই নির্ভরশীল। তাহলে মস্কো কেন কারাকাসের পেছনে রয়েছে? বিবিসির রাশিয়ার সার্ভিসের সম্পাদক ফামিল ইসমাইলভ ব্যাখ্যা করছেন যে, এর একটা মূল বিষয় হলো যে, পুতিন রাশিয়ার জনগণকে একটি বার্তা দিতে চান। ''রাশিয়ার জনগণকে এটা দেখানো জরুরি যে, অবরোধ সত্ত্বেও রাশিয়া একটি পরাশক্তি হিসাবে ভূমিকা রাখছে এবং তার বন্ধু দেশ রয়েছে।'' তবে ভেনেজুয়েলার ব্যাপারটি ওয়াশিংটনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভেনেজুয়েলায় সামরিক অভিযানের সম্ভাবনা নাকচ করে দেননি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ''দক্ষিণ ফ্লোরিডা��় ভেনেজুয়েলা থেকে আসা বিশাল একটি জনগোষ্ঠী রয়েছে। এছাড়া কিউবা থেকে চলে আসা লোকজনও রয়েছে, যারা ভেনেজুয়েলা সরকারের পরিবর্তন দেখতে চায়।'' বলছেন ডবিন্স। কিউবা আর ভেনেজুয়েলার মধ্যে সামরিক সহযোগিতাসহ ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে। ডবিন্স বলছেন, ''২০২০সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে আর ফ্লোরিডাকে যদি আমরা ভোটের বিচারে দোদুল্যমান স্টেট হিসাবে ধরে নেই, তাহলে এটা বলা যেতে পারে যে, ভেনেজুয়েলা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ক্যাম্পেইনের অন্যতম প্রধান বিষয় হয়ে উঠবে।'' পাশাপাশি ভেনেজুয়েলার মানবাধিকার পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য দক্ষিণ আমেরিকান দেশগুলোর ওপর প্রভাব ফেলছে, কারণ অনেক অভিবাসী এসব দেশে আশ্রয় নিতে চাইছেন। ভেনেজুয়েলার মানবাধিকার পরিস্থিতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থীর সংখ্যা বাড়ছে সুতরাং সবটাই কি পররাষ্ট্রনীতির ব্যাপার? ভ্লাদিমির রোভিন্সিকি বিশ্বাস করেন, মস্কো তাদের নিজস্ব খেলায় ওয়াশিংটনকে ব্যস্ত রাখতে চাইছে। ''রাশিয়ানদের মতে, ইউক্রেন, জর্জিয়া এবং অন্য সাবেক সোভিয়েত দেশগুলোর মতো প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে মস্কোর যে সমস্যা রয়েছে, তা আমেরিকান মদদে হয়েছে।'' সুতরাং, রোভিন্সিকি বলছেন, রাশিয়াও চাইছে ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান দেশগুলোয় নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে, যা হতে পারে আমেরিকার পেছন দরজায় কড়া নাড়ার মতো। বিরোধী নেতা ও স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট হুয়ান গুয়াইদোকে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ ''রাশিয়ার সরকার ভাবতে পারে, তারা যদি ভেনেজুয়েলা এবং কিউবার মতো দেশের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে, তাহলে রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি বদলাতে চাপ তৈরি করতে পারে।'' ডবিন্স বলছেন, এই অঞ্চলে রাশিয়ার ভূমিকাকে সবসময়েই হুমকি হিসাবে দেখে আসছে ওয়াশিংটন। ফলে যেসব দেশ রাশিয়াকে সমর্থন করে,তাদের যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করতে পারে না। মাদুরোকে নিয়ে কী হবে? ডবিন্স বলছেন, ''তিনি যদি ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে, তাহলে রাশিয়া এটা প্রমাণ করে দেবে যে, তারা একটি সরকারকে টিকিয়ে রাখতে পারে, যেমনটা করেছে সিরিয়ায়।'' ''মাদুরোকে যদি বিদায় নিতে হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র এটা প্রমাণ করতে পারবে যে, তারা অপছন্দের কোন সরকারকে হটিয়ে দিতে পারে, যা রাশিয়ার জন্য একটি বড় ঝুঁকি হিসাবে দেখা হবে। যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়ার মধ্যে দ্বন্দ্বের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে ভেনেজুয়েলা। +text: কলকাতা টেস্টে আলোচনার বিষয় গোলাপি বল কী আচরণ করবে এই বল, কতটা সুইং করবে, কীভাবে ব্যাটিং করতে হবে গোলাপি বলের বিরুদ্ধে ইত্যাদি নানা প্রশ্ন নিয়ে কথা বলছেন খেলোয়াড়রা। আজিঙ্কা রাহানে ভারতের টেস্ট দলের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান, যিনি গোলাপি বল দিয়ে অনুশীলন করে রীতিমত ভীতি প্রকাশ করেছেন। "বলটা ধীরে খেলতে হবে, ব্যাট ও শরীরের দূরত্ব কম রাখা প্রয়োজন," গোলাপি বলে অনুশীলন শেষেই কীভাবে খেলতে হবে তার একটা ধারণা দিতে চাইলেন তিনি। গোলাপি বল নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে নানা গুঞ্জন, সেটা বোঝা গিয়েছিল বিরাট কোহলির ১৩ই নভেম্বরের এক সংবাদ সম্মেলনে। পরের দিনই ছিল প্রথম টেস্ট, যেটা কিনা লাল বলের। কিন্তু সেদিন সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন ছিল গোলাপি বল নিয়ে - কী ভাবছেন কোহলি? কোহলি বলেন, "শুরুতে খানিকটা দেখে-শুনে খেলতে হবে, লাল বলে যতটা সহজে আপনি বলের সাথে মানিয়ে নেন গোলাপি বলে তেমনটা হবে না। তেমন শট খেলাও কঠিন হবে।" "সিম অনেক বেশি নড়াচড়া করে, বিশেষত যেসব মাঠে সুইং হয় সেসব মাঠে খেলা অনেক কঠিন হবে, যদি ঘাস থাকে তো কথাই নেই। এটা বেশ বড় পরীক্ষা হতে যাচ্ছে।" তবে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তার স্বার্থে এই খেলা পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেয়ার কথা বলেন কোহলি, "টেস্ট ক্রিকেটে এখন নতুন উপায় অবলম্বন করা হচ্ছে, সেখানে এই খেলাটিকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলবে।" গোলাপি বল দিয়ে খেলতে উদগ্রীব বলে জানিয়েছেন বিরাট কোহলি একদিন ব্যাট করেই বলের আচরণে একটা পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন কোহলি, "এটা বেশি সুইং করে, এটায় বাড়তি ল্যাকার থাকবে (বলের ওপরের চকচকে রঙের স্তর)। "ফাস্ট বোলারদের জন্য এটা বিশাল একটা সুবিধা। ল্যাকার কমে গেলে পুরোনো বল কেমন করবে - সেটাও হবে একটা দেখার বিষয়।" ল্যাকার হচ্ছে সেই পদার্থ - যার কারণে নতুন লাল বা গোলাপী বলে ঔজ্জ্বল্য থাকে। উইকেটের সাহায্য ছাড়াও বল সাধারণত সুইং করে দুটো উপাদানের ওপর নির্ভর করে, যার একটি সিম, আর আরেকটি হলো বলে ল্যাকারের পরিমাণ। ল্যাকার যতো কমতে থাকে তত ঔজ্জ্বল্য কমতে থাকে। যে কারণে পুরোনো বল দিয়ে যেসব বোলার সুইং করাতে পারেন - তাদের কদর থাকে বাড়তি। আজিঙ্কা রাহানে বলেন, "আমরা এমন কিছু দিয়ে কখনো খেলিনি, আমরা অপেক্ষা করছি কী হয় আসল��, কীভাবে খেলবো তা ভেবে আমি খুব উত্তেজিত।" দ্রুত মানিয়ে নিতে চাইছেন ভারত সহ-অধিনায়ক রাহানে, "এই বলের মুভমেন্ট লাল বলের চেয়ে অনেক বেশি। মানিয়ে নেয়াটাই ব্যাপার। আশা করছি সবাই দ্রুত মানিয়ে নিতে পারবে। "আমরা এখন সম্পূর্ণ অন্য ফরম্যাটে খেলব। টেকনিক্যাল স্কিলও একটা ভুমিকা রাখবে। মানসিকভাবে গোলাপি বলের সাথে মানিয়ে নেয়াটাই বড় কথা।" ভারতের ঘরোয়া লিগ দুলীপ ট্রফিতে গোলাপি বল দিয়ে খেলেন বিশ্বের অন্যতম সেরা একজন টেস্ট ব্যাটসম্যান চেতেশ্বর পুজারা, "যত খেলবো তত পেস ও বাউন্সের সাথে আমরা মানিয়ে নিতে পারবো, দুলীপ ট্রফিতে খেলেছি এই বল দিয়ে। তাই আমি কিছুটা হলেও জানি ঠিক কী করতে হবে।" ক্রিকেট সম্পর্কে আরও কিছু খবর: গোলাপি বল দিয়ে প্রথমবার খেলে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড বাংলাদেশের প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্ট খেলার কথা ছিল আরো আগেই। নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ড সর্বপ্রথম বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে প্রস্তাব দেয় গোলাপি বলে দিবা-রাত্রির টেস্ট ক্রিকেট খেলার কথা। কিন্তু সেবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড যথাযথ প্রস্তুতির অভাবের কথা বলে সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেয়। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের নতুন প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলি, অধিনায়ক বিরাট কোহলির সাথে আলোচনা করে দিবা-রাত্রির টেস্ট খেলার প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এই বিষয়ে রাজি হয়। মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৫ই নভেম্বর প্রথমবার গোলাপি বলে খেলে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। জাতীয় লিগে খুলনা-রংপুরের ম্যাচ শেষে মিরপুরের মাঝের উইকেটে গোলাপি বল দিয়ে নেট করতে নামেন ইমরুল কায়েস ও মেহেদি হাসান মিরাজ। অনুশীলনের জন্য ইমরুলদের জন্য আনানো হয়েছে কুকাবুরার গোলাপি বল, ভারতে তাদেরকে খেলতে হবে এসজি বলে। ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে গোলাপি এসজি নিয়ে সমালোচনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সেটা নিয়েই টেস্ট খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিসিআই। এজন্য ৭২টি বল অর্ডার করেছে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড, ভারতের গণমাধ্যমের খবরে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। গোলাপি বলে প্রথম টেস্ট খেলে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড প্রথমবার গোলাপি বলে অনুশীলনের অভিজ্ঞতা নিয়ে ইমরুল বলেন লাল বলের সঙ্গে এর পার্থক্য, "গোলাপি বল সুইংটা একটু বেশি করে বলে আমার কাছে মনে হলো। যেহেতু আমি প্রথমবার অনুশীলন করলাম, হয়তো এরপর আরেকটু ভালো করে বুঝতে পারবো আসলে কী হয়। মিরপুরের উইকেট একটু কঠিন ছিল, কিন্তু আমার কাছে মনে হয় গোলাপি বল সুইং বেশি করে।" বাংলাদেশের এই ওপেনিং ব্যাটসম্যান আরো বলেন, "লাল বলে উজ্জ্বলতাটা নষ্ট হতে একটু সময় লাগে। কিন্তু গোলাপি বলে আমি যতটুক খেললাম আমার কাছে মনে হয় যে উজ্জ্বলতাটা দ্রুত কমে। তবে যতক্ষণ থাকবে সুইংটা একটু বেশি করবে।" তবে বাংলাদেশের কোচ রাসেল ডমিঙ্গো গোলাপি বল দিয়ে প্রস্তুতি ম্যাচ না খেলার আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন। সাধারণত কোনো টেস্ট সিরিজের আগে সফরকারী দল, স্থানীয় কোনো দলের সাথে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে থাকে কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কোচ রাসেল ডমিঙ্গো এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশের কোচ ডমিঙ্গো বলেন, "খুব ভালো হতো গোলাপি বলে যদি দুই দিনের একটা ওয়ার্ম আপ ম্যাচ খেলা যেত। দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সঙ্গে আমার সময়ে অ্যাডিলেডে টেস্টের আগে গোলাপি বলে একটা দুইদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছিলাম আমরা। প্রথম ও দুই টেস্টের মধ্যে মাত্র তিনদিনের ব্যবধান ছিল বলে কিছু খেলোয়াড়ের মধ্যে বেশ উদ্বেগ ছিল।" রাসেল ডমিঙ্গো মনে করেন, গোলাপি বলে ব্যাটসম্যানদের জন্য সবচেয়ে বিপদজনক সময় সন্ধ্যা। "আমাদের একেবারে নির্দিষ্ট করে সূর্যাস্ত এবং আঁধার নামার মাঝের সময়টায় ব্যাট করতে হবে। এই সময়টাতে সংগ্রাম করতে হয় বেশি। রিস্ট স্পিনারদের বিপক্ষে খেলোয়াড়দের বেশ লড়তে হয়। কারণ, সিম দেখতে সমস্যা হয়।" এই বলে খেলার শঙ্কার মূল কারণ বাংলাদেশ ও ভারতের সিম বোলারদের মানের পার্থক্য। ভারতের বোলিং লাইন আপে এখন মোহাম্মদ শামি, ইশান্ত শর্মা, উমেশ ইয়াদাভের মতো বিশ্বমানের পেস বোলার আছেন যারা দুই দিকে বল সুইং করানো ও ব্যাটসম্যানদের মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে বল করে সুবিধা নিতে পারেন উইকেটের। কিন্তু বাংলাদেশের প্রথম টেস্টে লম্বা ব্যাটিং লাইন আপ তৈরির জন্য ২ পেস বোলার নিয়ে নামে এবং শেষ পর্যন্ত ভারতের এক ইনিংসে করা রানের চেয়েও ১৩০ রান কম করে দুই ইনিংসে অল-আউট হয়ে যায়। লাল বল রাতের অন্ধকারে দেখা বেশ কঠিন। বিশেষত যখন সেটা আকাশে ওঠে। তাই ২০০০ সাল থেকেই গোলাপি বলের পরিকল্পনা চলেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের নানা বৈঠকে। শেষ পর্যন্ত ২০০৯ সালে গোলাপি বল তৈরি করা হয় এবং সেটি দ���য়ে ধীরে ধীরে খেলা শুরু করা হয়। ২০১৫ সালের ১৭ই নভেম্বর প্রথমবারের মতো অ্যাডেলেইডে দিবা রাত্রির টেস্ট ম্যাচ আয়োজিত হয় অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে যেখানে ৩ উইকেটে অস্ট্রেলিয়া জয় পায়। আরো পড়তে পারেন: টেস্টেও চালু হয়ে গেল দিন-রাতের খেলা,আর গোলাপি ক্রিকেট বল বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দলই এই প্রথম গোলাপি বলে টেস্ট ম্যাচ খেলবে। উভয় দলেই চলছে এই বল নিয়ে বিস্তর আলোচনা। +text: স্যান ডিয়েগোর সাফারি পার্কের একটি গরিলা বন্দী অবস্থায় থাকা এপ বা বানর-জাতীয় প্রাণীর মধ্যে এই প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস সংক্রমণের কথা জানা গেল। তবে এর আগে গরিলা ছাড়া বিড়াল ও কুকুরসহ অন্য কিছু প্রাণীর মধ্যেও করোনাভাইরাস সংক্রমণ হতে দেখা গেছে। পার্ক কর্তৃপক্ষ বলছে, কয়েকটি গরিলার ক্ষেত্রে কাশিসহ কিছু উপসর্গ দেখা গেছে - তবে তাদের কেউই গুরুতর অসুস্থ হয়নি। মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, মানুষ ও এপ বা বানরজাতীয় প্রাণীর মধ্যে বহু মিল আছে এবং সেকারণে করোনাভাইরাস গরিলার মত বিপন্ন প্রজাতির এপদের জন হুমকি হয়ে উঠতে পারে বলে এর আগেই বিজ্ঞানীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আরো পড়তে পারেন: কোভিড: বিজ্ঞানীরা এখন কেন মনে করছেন বাদুড় দায়ী নয় করোনাভাইরাস: ভাইরাস ছড়ানো বন্যপ্রাণীর সন্ধান চলছে অন্য প্রাণী থেকে মানুষের দেহে রোগ ছড়াচ্ছে কেন? গরিলার মত এপদের মধ্যে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা স্যান ডিয়োগোর সাফারি পার্কটিতে এ পর্যন্ত একটি গরিলা টেস্টের পর নিশ্চিতভাবে করোনাভাইরাস পজিটিভ বলে চিহ্নিত হয়েছে, তবে আটটি গরিলাই এ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে বলে অনুমান করছে কর্তৃপক্ষ। ধারণা করা হচ্ছে যে, গরিলাগুলোর দেখাশোনা করেন এমন কোন সাফারি পার্কের কর্মী থেকেই এরা সংক্রমিত হয়েছে। এক বিবৃতিতে সাফারি পার্কটির নির্বাহী পরিচালক লিসা পিটারসন বলেন, "কারো কারো কফ জমে গেছে এবং কাশি হচ্ছে - তা ছাড়া গরিলারা ভালোই আছে।" "তাদের কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে এবং তারা খাবার খাচ্ছে, পানি খাচ্ছে। আমরা আশা করছি যে তারা পুরোপুরি সেরে উঠবে। ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সাফারি পার্কটি বন্ধ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্যান ডিয়েগো সাফারি পার্কে অন্তত: ৮টি গরিলার দেহে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ধরা পড়েছে। +text: সীমিত পরিসরে চ��লু হয়েছে বিমান চলাচল। প্রতি সপ্তাহে হাতে গোনা কয়েকটি ফ্লাইট চলাচলের কারণে বাংলাদেশে ছুটি কাটাতে আসা অভিবাসীরা সময় মতো ফিরে যেতে পারবেন কিনা, সেটা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। রিটার্ন টিকেট করেও অনেক সিট পাচ্ছেন না। আবার যারা রিটার্ন টিকেট করতে পারেননি তাদের কাছে চাওয়া হচ্ছে পাঁচ থেকে ১০ গুণ বেশি দাম। বরিশালের চর নাজিরপুরের বাসিন্দা মল্লিক মহিউদ্দিন এ বছরের শুরুতে ছুটি কাটাতে বাংলাদেশে আসেন। তিনি ইতালিতে একটি রেস্তোরায় কাজ করেন। রোজার ঈদ শেষে ২৮শে মে তার ইতালি ফিরে যাওয়ার কথা থাকলেও দেশব্যাপী লকডাউনের কারণে আটকে যান। এদিকে তার টিকেট এবং ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে আসায় তিনি চরম উদ্বেগের মধ্যে দিন পার করছেন। সময়মত কাজে যোগ দিতে না পারায় চাকরি হারানোর আশঙ্কা তো আছেই। তার ওপর বিদেশে গিয়ে নতুন চাকরি সন্ধানের সুযোগটিও পাবেন কিনা সেটা নিয়েও দেখা দিয়েছে সংশয়। 'আমি তো আপ-ডাউন টিকেট কাটসি। এখন এয়ারলাইন্স বলে, ১৫ আগস্টের আগে কোন সিরিয়াল নাই। সব সিট বুকিং হয়ে গেসে। এখন শিগগির কবে যাইতে পারবো সেটাও কেউ বলতে পারেনা। আমি টাইম মতো যাইতে পারলাম না। এজন্য চাকরিটাও মনেহয় থাকবে না। আবার চাকরি পাব কিনা জানিনা।' শুরুতে ১০টি রুটে বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত ২১শে মার্চ প্রথমে ১০টি দেশে বিমান চলাচল স্থগিত করে বাংলাদেশের বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। এরপর লকডাউনের সময়সীমা বাড়ার সাথে সাথে বিমান বন্ধের সময়সীমাও বাড়তে থাকে। এরপর পহেলা জুন থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে এবং ১৬ই জুন থেকে আন্তর্জাতিক কয়েকটি রুটে সীমিত পরিসরে বিমান চলাচল স্বাভাবিক হয়। শুধুমাত্র বাংলাদেশ বিমান, কাতার এয়ারওয়েজ এবং এমিরেটস হাতে গোনা কয়েকটি রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারছে। এমন অবস্থায় যারা রিটার্ন টিকেট করে এসেছেন তাদেরকে আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে সিট দিচ্ছে এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। আর যারা টিকেট করেননি তাদের কাছে চাওয়া হচ্ছে ৫ থেকে ১০ গুণ বেশি দাম। সবচেয়ে বেশি দাম বাড়ানো হয়েছে কাতার এয়ারলাইন্সের। এমন অবস্থায় গ্রাহকরা টিকেট বুকিং দিতে ট্রাভেল এজেন্সিগুলোয় যাচ্ছে। কিন্তু দাম দিয়েও কোন টিকেট পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রাভেল এজেন্সির কর্মকর্তা। তিনি জানান, ক��ন ফ্লাইটেই ইকোনমির সিট অগাস্টের আগে খালি নেই। এখন হাতে গোনা কয়েকটি বিজনেস ক্লাসের সিট খালি আছে। সেগুলোর দাম ধরা হয়েছে আকাশচুম্বী। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, কাতার এয়ারওয়েজে আগে ওয়ানওয়ে টিকেটের দাম ছিল ৫০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা। এখন বিজনেস সিটের ন্যূনতম তম মূল্য ৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। ঢাকা থেকে বাহরাইনে যাওয়ার যে টিকেট আগে ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা ছিল। সেটা এখন বেড়ে এক লাখ ৩৮ হাজারে ঠেকেছে বলে তিনি জানান। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সপ্তাহে ১টি মাত্র ফ্লাইট পরিচালনা করছে। কাতার এয়ারওয়েজকে সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট এবং বাংলাদেশ বিমান সপ্তাহে ১টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে বলে জানা যায়। এমিরেটসে এ বিষয়ে তথ্য জানতে যোগাযোগ করা হলে কোন সাড়া মেলেনি। সব মিলিয়ে প্রতি সপ্তাহে এই তিনটি এয়ারলাইন্সে ৬০০-৮০০ জন যাত্রী যেতে পারছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু দেশ ছাড়ার অপেক্ষায় রয়েছে লাখ লাখ প্রবাসী। এভাবে অনেক প্রবাসীদের রিটার্ন টিকেটে বিদেশে ফেরার শিডিউল দুই তিন মাস এমনকি তারও বেশি পিছিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে প্রতি ফ্লাইটে ৩৫% কম যাত্রী বহন করার কারণে এবং সংক্রমণ রোধে সতর্ক ব্যবস্থা নেয়ার কারণে এই শিডিউল বিপর্যয় এবং টিকেটের মূল্য বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোকাব্বির হোসেন। আরও পড়তে পারেন: নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নানা অভিযোগের জবাব কী? রেলে বিক্রি করা হবে ৫০% টিকেট, পহেলা জুন থেকে চলবে বিমান সৌদি আরবে এক লাখ বাংলাদেশি শ্রমিকের কর্মসংস্থান হুমকির মুখে বাংলাদেশের সাথে কুয়েতের কেন বিমান চলাচল স্থগিত তিনি বলেন, 'চেক ইনের পর আমরা যাত্রীদের একটি সুরক্ষা ব্যাগ দেই, যেখানে দুটো মাস্ক, গ্লাভস, স্যানিটাইজার এবং ফেইস শিল্ড থাকে। ইকোনমিতে ৫টা সিট পাশাপাশি। আমরা মাঝখানের সিটগুলো খালি রাখছি। পেছনের একটা সারি খালি রাখা হচ্ছে। এ কারণে ৬৩% যাত্রী বহন করা যাচ্ছে। এ কারণে টিকেটের রেট কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।' এছাড়া ঢাকা থেকে যাত্রী পরিবহন করা গেলেও, ফেরার পথে কোন যাত্রী না থাকায় টিকেট দাম বাড়িয়ে সেটা পুষিয়ে নেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান। প্রবাসীরা দ্রুত ফিরে যেতে এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে অনলাইনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ক��ন সাড়া পাচ্ছে না। আশা করা হচ্ছে ৩রা জুলাইয়ের পর সরকার ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক করার অনুমোদন দিলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে পারে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বাংলাদেশে টানা তিন মাস আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রাখার পর গত ১৬ইশে জুন থেকে সীমিত পরিসরে ফ্লাইট চালু করা হয়েছে। +text: সেন্ট পিটার্সবার্গের কাজান ক্যাথেড্রালে হামলার পরিকল্পনা ছিল সন্ত্রাসীদের রাশিয়ার নিরাপত্তা সংস্থা এফএসবি বলছে, সেন্ট পিটার্সবার্গের কাজান গীর্জায় আত্মঘাতী হামলা করে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালানোর পরিকল্পনা ছিল সন্ত্রাসীদের। এএফএসবি'র এক বিবৃতিতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ আইএস'এর সমর্থক সাতজনকে গ্র্রেপ্তার করার কথা জানানো হয়। শনিবারে হামলাটি করার পরিকল্পনা ছিল সন্ত্রাসীদের। সিআইএ'র কাছ থেকে তথ্য পেয়ে পরিকল্পনা বানচাল করে দিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ। গত মাসে ভিয়েতনামে এক সম্মেলনে দেখা হয় ট্রাম্প ও পুতিনের হোয়াইট হাউস ও ক্রেমলিন নিশ্চিত করেছে, এই ঘটনার পর সন্ত্রাসী হামলা বিষয়ে আগাম তথ্য দেয়ার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন টেলিফোন করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। দুই প্রেসিডেন্টের ফোনালাপের সময় রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে সবসময় সন্ত্রাসী হুমকি বিষয়ক তথ্য জানাবে রাশিয়া। হোয়াইট হাউস থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ঘটনা ঘটার আগেই সন্ত্রাসীদেরকে আটক করা গেছে। নইলে, এই হামলা হলে বিপুল সংখ্যক মানুষ নিহত হবার আশঙ্কা ছিল। আর রবিবারে ক্রেমলিন থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, একটি সন্ত্রাসী দল পিটার্সবার্গের গীর্জা ও অন্যান্য পাবলিক প্লেসে বিস্ফোরন ঘটানোর লক্ষ্যে কাজ করছিলো। রাশিয়ান সংবাদ সংস্থা 'ইতার-তাস' এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ তে ১৮টি সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা বানচাল করার কথা জানিয়েছে এফএসবি'র পরিচালক আলেক্সান্দার বোর্তনিকভ। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার নেতারা নিশ্চিত করেছেন যে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ'র দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলা থেকে রেহাই পেয়েছে রাশিয়া। +text: করোনাভাইরাসে যারা বেশি অসুস্থ হচ্ছেন তাদের ফুসফুসের ওপর মারত্মক প্রভাব পড়ার লক্ষণ দেখছেন চিকিৎসকরা ব্রিটেনে চিকিৎসকরা বিবিসিকে বলেছেন যারা কর���নাভাইরাসে গুরুতরভাবে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তারা আশংকা করছেন, তাদের একটা বড় অংশের ফুসফুস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকতে পারে, যাকে বলা হয় পালমোনারি ফাইব্রোসিস। ফুসফুসের এই ক্ষতি থেকে সেরে ওঠা যায় না, এবং এর উপসর্গগুলো হল মারাত্মক শ্বাসকষ্ট, কাশি এবং ক্লান্তিবোধ। ইংল্যান্ডের জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অধীনে সেরে ওঠা রোগীদের বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দেয়ার ও পুর্নবাসনের জন্য কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ইংল্যান্ডের একজন ট্যাক্সিচালক, কোভিডে আক্রান্ত হবার পর যার অবস্থার অবনতি হয় এবং ১৩দিন ভেন্টিলেটারে থাকাসহ প্রায় চার সপ্তাহ যাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়, তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবার পর এরকম একটি পুর্নবাসন কেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন আরও দুই সপ্তাহ। সেরে ওঠার ছয় সপ্তাহ পর এপ্রিলের মাঝামাঝি বাসায় ফিরে অ্যান্টনি ম্যাকহিউ এখনও সিঁড়ি ভাঙতে বা ছোটখাট সহজ কাজ করতে গিয়ে হাঁপিয়ে পড়ছেন। নিচু হতে গিয়েও তার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। ফুসফুসে আস্তরণ হাসপাতালে সিটি স্ক্যানে দেখা গেছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবার পর তার দুটি ফুসফুসের ওপরই একটা সাদা কুয়াশার আস্তরণ তৈরি হয়েছে- অনেকটা ভাঙা কাঁচের মত দেখতে। চিকিৎসকরা বলছেন এটা করোনাভাইরাস আক্রমণের একটা বৈশিষ্ট্য। করোনাভাইরাসে গুরুতরভাবে আক্রান্ত হলে শরীরের প্রতিরোধী ব্যবস্থা যখন অতিমাত্রায় সক্রিয় হয়ে ওঠে, তখন এর ফলে প্রচুর শ্লেষ্মা, জলীয় পদার্থ এবং কোষ তৈরি হয়, যা ফুসফুসে যে বাতাস চলাচলের থলিগুলো আছে যাকে অ্যালভিওলি বলা হয়, সেগুলোকে ভর্তি করে ফেলে। এটা যখন হয়, তখন নিউমোনিয়া দেখা দেয় এবং সাহায্য ছাড়া মানুষের পক্ষে নিঃশ্বাস নেয়া সম্ভব হয় না। কোভিড আক্রান্ত হবার আগে সুস্থ ফুসফুসের ছবি কোভিড আক্রান্ত হবার পর ক্ষতিগ্রস্ত ফুসফুসের ছবি আক্রান্ত হবার ছয় সপ্তাহ পর নেয়া মি. ম্যাকহিউয়ের এক্স-রে-তে দেখা গেছে তার ফুসফুসের ওপর একটা সাদা ছায়ার মত স্তর তৈরি হয়েছে যেটাকে ডাক্তাররা বলছেন পালমোনারি ফাইব্রোসিস বা ফুসফুসে ক্ষত সৃষ্টির প্রাথমিক লক্ষণ। ব্রিটিশ সোসাইটি অফ থোরাসিক ইমেজিংএর একজন সদস্য এবং রয়াল কলেজ অফ রেডিওলজিস্টের উপদেষ্টা ড. স্যাম হেয়ার বলছেন, "সাধারণত এধরনের ভাইরাস সংক্রমণের পর ছয় সপ্তাহ হয়ে গেলে ফুসফুসের অবস্থা আবার আগের জায়গায় ফিরে যাবার কথা- অন্তত চিকিৎসকরা সেটাই আশা করেন। কিন্তু এক্ষেত্রে সেটা হয়নি এবং সেজন্যই এটা উদ্বেগের কারণ।" পালমোনারি ফাইব্রোসিস কী? পালমোনারি ফাইব্রোসিস একধরণের রোগ যেখানে ফুসফুসের নরম অংশগুলো নষ্ট হয়ে যায় এবং সেখানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। করোনাভাইরাস: সুস্থ হয়ে উঠতে কতদিন লাগে? কাদের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে আর কাদের জন্য জরুরি নয় করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় যাদের স্বাস্থ্য সমস্যা আছে তাদের কী করতে হবে ধারণা করা হচ্ছে যাদের হালকা উপসর্গ হয়, তাদের ক্ষেত্রে স্থায়ী ক্ষতি হবার সম্ভাবনা কম। কিন্তু যাদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে, বিশেষ করে যাদের নিবিড় পরিচর্যায় রাখার দরকার হচ্ছে বা যাদের সংক্রমণ খুবই গুরুতর পর্যায়ে হচ্ছে, তাদের ভবিষ্যতে জটিলতা তৈরি হবার আশংকা আছে। মার্চ মাসে চীনে চালানো এক জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, সেরে ওঠা ৭০ জন করোনা রোগীর মধ্যে ৬৬জনেরই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবার পরেও ফুসফুসের নানা সমস্যা রয়ে গেছে। ব্রিটেনের রেডিওলজিস্টরা সেরে ওঠা রোগীদের প্রাথমিক স্ক্যান পরীক্ষার ভিত্তিতে বলছেন যারা কোভিডে বেশি অসুস্থ হচ্ছে তাদের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির আশংকা বেশি। "সেরে ওঠার ছয় সপ্তাহ পর যেসব রোগীর ফুসফুসের স্ক্যান আমরা দেখেছি, তার থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া ২০ থেকে ৩০ শতাংশ রোগীর ফুসফুসে ক্ষত তৈরির লক্ষণ পরিষ্কার," বলছেন ড. হেয়ার। অন্য রেডিওলজিস্টরাও বিবিসিকে একই উদ্বেগের কথা বলেছেন, তারাও একই প্যাটার্ন দেখছেন। এর আগে যে দুটো করোনাভাইরাস সংক্রমণ আমরা দেখেছি- সার্স এবং মার্স - তাতে ২০ থেকে ৬০ শতাংশ রোগীর পালমোনারি ফাইব্রোসিস ধরনের কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি হয়েছিল। তবে সার্স ও মার্স তুলনামূলকভাবে আরও সাফল্যের সাথে মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু কোভিড-১৯ এর জীবাণু সারা বিশ্বে ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে। এবং এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত ৮০ লাখের বেশি মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছে। "আমার মূল উদ্বেগটা হল কোভিড-১৯ বিশাল একটা জনসংখ্যাকে সংক্রমিত করেছে," বলছেন ড. হেয়ার। "এই ভাইরাস এত মানুষকে আক্রমণ করেছে, ফলে কত মানুষকে যে দীর্ঘমেয়াদে এই ভাইরাস পঙ্গু করে দিয়েছে তার সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বিশাল।" ফুসফুসের ওপর ক��োনাভাইরাসের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে চিকিৎসকরা রীতিমত উদ্বিগ্ন ভবিষ্যৎ চিকিৎসা ফুসফুসের ফাইব্রোসিস বা ফুসফুসের দেয়াল মোটা হয়ে যাওয়া সারানো যায় না, কারণ ফুসফুসের কোষ একবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা চিরস্থায়ী হয়। তবে নতুন ওষুধ দিয়ে এই ক্ষতির মাত্রা কমানো যেতে পারে। হয়ত তা কিছুটা বিলম্বিত বা আটকানোও সম্ভব হতে পারে, তবে তার জন্য এই সমস্যা সময়ে ধরা পড়তে হবে। "সমস্যাটা কতটা গুরুতর তা বোঝা দরকার এবং জানা দরকার ঠিক কখন এটা আটকাতে ওষুধ দেয়া দরকার," বলছেন ব্রিটেনের স্বাস্থ্য গবেষণা বিষয়ক জাতীয় ইন্সটিটিউটের গবেষক ও অধ্যাপক জিসলি জেনকিন্স। "আমাদের জীবদ্দশায় এর আগে একই সাথে এত বিপুল সংখ্যক মানুষের ফুসফুস এধরনের আঘাতের মুখোমুখি হয়নি।" কাজেই করোনাভাইরাস থেকে সেরে ওঠা রোগীদের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির মূল্যায়ন করা এবং তাদের এই ক্ষতি কমাতে সাহায্য করা যায় কিনা সেটাই এখন গবেষক ও চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের সামনে আরেকটা বড় চ্যালেঞ্জ। করোনাভাইরাস: ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাতটি পরামর্শ ব্রিটেনে কোভিড-১৯য়ে গুরুতর আক্রান্ত হয়ে সেরে উঠেছে, এমন হাজার হাজার মানুষকে হাসপাতালে যাবার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে, তাদের ফুসফুস চিরকালের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য। +text: নারীরা জরায়ুমুখ ক্যান্সারে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশে নারীদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের পরেই জরায়ুমুখ ক্যান্সারের স্থান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর ৫ লাখ ৭০ হাজার নারী এই জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং প্রায় ৩ লাখ ১০ হাজার নারী এর ফলে মারা যান। আর ৯০ শতাংশ মৃত্যুর ঘটনাই ঘটছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার বা আইএআরসি'র তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর নতুন করে ৮ হাজার ২৬৮ জন নারীর শরীরে শনাক্ত হচ্ছে জরায়ুর ক্যান্সার। আর বছরে ৪ হাজার ৯৭১ জন নারী জরায়ু মুখের ক্যান্সারে মারা যাচ্ছেন। হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসকে (এইচপিভি) জরায়ুমুখ ক্যান্সারের অন্যতম কারণ হিসেবে গণ্য করা হয়। ১০০টিরও বেশি প্রজাতির এইচপিভি আছে। এর মধ্যে দুই ধরনের হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের কারণে এই ক্যান্সার হয়ে থাকে বলে জনাচ্ছেন বিশেষ���্ঞরা। তবে ভাইরাসটি শরীরে প্রবেশের পরপরই কিন্তু ক্যান্সার হয় না। গবেষক ও চিকিৎসকরা বলছেন, জীবাণু প্রবেশের পর ১৫ থেকে ২০ বছরও সময় লাগে জরায়ুমুখের ক্যান্সার হতে। তার মানে হলো এটি নির্ণয়ে অনেকটা সময় পাওয়া যায়। তাই নিয়মিত স্ক্রিনিংয়ের ওপর জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। অন্য ধরনের ক্যান্সারের তুলনায় জরায়ু মুখের ক্যান্সার কিন্তু খুব সহজে নির্ণয় করা যায়। তবে জরায়ু মুখের ক্যান্সারের মুল সমস্যা হল এটি শেষ পর্যায়ে গেলেই শুধুমাত্র ব্যথা দেখা দেয়। আর এই ক্যান্সারের লক্ষণগুলোকে অনেকেই পিরিয়ডের মেয়েলী সমস্যা বলে ভুল করে থাকেন। এমন ভুল যেন না হয়, সেজন্য লক্ষণগুলো মনে রাখা জরুরি। জরায়ু ক্যান্সারের ঝুঁকি, লক্ষণ ও চিকিৎসার বিষয়ে জানতে পারবেন আমাদের এই ভিডিওতে। ক্যান্সার নিয়ে বিবিসি বাংলার ধারাবাহিক আয়োজনের তৃতীয় পর্ব এটি। দেখতে পাবেন ইউটিউব চ্যানেলও। আরো দেখুন: ক্যান্সার: কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি, লক্ষণ ও চিকিৎসা নারী-পুরুষ সবারই হতে পারে স্তন ক্যান্সার, বুঝবেন কীভাবে? জরায়ু ক্যান্সারকে বলা হয় 'নীরবঘাতক'। কারণ এই অসুখে আক্রান্ত হলেও অনেক নারী এর লক্ষণ বুঝতে পারেন না। আবার ভিন্ন লক্ষণ দেখা দিলেও অনেক সময় গুরুত্ব দেন না। +text: সেনাবাহিনী নেমেছে, কাজ করবে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সোমবার প্রথম দিনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সেনাবাহিনীর টিম রাস্তায় টহল দিয়েছে। এর মধ্যে সেনাবাহিনী কাজ শুরু করেছে ৩৮৯টি উপজেলায় এবং নৌবাহিনী কাজ করছে মোট ১৮টি উপজেলায়। নির্বাচনী প্রচারাভিযান শুরু থেকেই বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ, সহিংস হামলা এবং হতাহতের ঘটনা ঘটে চলেছে। বিরোধীদল বিএনপির পক্ষ থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় তাদের নির্বাচনী প্রচারণায সহিংস হামলার অভিযোগ করে আসছে। গত কয়েকদিন সবচেয়ে বেশি হামলা বা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা নোয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায়। সশস্ত্র বাহিনী মাঠে নামার পর পরিস্থিতির কি কোন পরিবর্তন হয়েছে? নোয়াখালীর শহরতলী থেকে কয়েকজন ভোটার বলছিলেন, সংঘর্ষ-সহিংসতার আতংকের পর সেনাবাহিনী মাঠে নামায় তাদের ভয় কিছুটা কমেছে। "এতদিন তো ভয়ে থাকতাম। বোমা মারে, সংঘর্ষ হয়। এখন তো সেনাবাহিনী নামছে। আমাদের ভয় একটু কমেছে" - বলছিলেন গৃহিণী মোসাম্মৎ জনি। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: অন্যেরা ব্যর্থ হলেই শুধু সেনাবাহিনী 'এ্যাকশনে যাবে' বড়দিন: 'মুসলিমদের যীশু'-কে স্মরণ করার দিন শিশুদের জেএসসি পরীক্ষার যৌক্তিকতা কী? সাংবাদিকদের চোখে মোটরসাইকেল নিষেধাজ্ঞা নির্বাচনী প্রচার চলছে পুরোদমে: খুলনা শহরের চিত্র নোয়াখালীর শহরতলী থেকে একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো: ইদ্রিস বলছিলেন, "এখানে নির্বাচনী প্রচারণায় আগে উত্তেজনা ছিল। এখন সেনাবাহিনী নামায় পরিস্থিতি শান্ত আছে।" প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলছেন, সেনাবাহিনী মাঠে নামায় ভোটারদের মাঝে আস্থা ফিরে আসবে। "সেনাবাহিনী মোতায়েনের উদ্দেশ্যই হলো, ভোটারদের আস্থা আসবে। এই সুযোগে আমি সব রাজনৈতিক দলের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করি, নির্বাচন যেন নির্বাচনের মতো হয়, সহিংসতা, নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি, তর্কবিতর্ক, হাঙ্গামা - এগুলো পরিহার করে, কেবলমাত্র তারা যেন নির্বাচনী কর্মকান্ডে মনোযোগ দেন" - বলেন তিনি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরো বলেছেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাাহিনী যেকোনো দায়িত্ব পালন করবে এবং তাদের সামনে কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তারা নিজ উদ্যোগে সেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করবে। বলা হয়েছে, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বেই সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। মতলব উত্তর এবং দক্ষিণ উপজেলা নিয়ে চাঁদপুর-২ আসনে বিরোধীদল বিএনপি প্রার্থী ড: জালালউদ্দিন অভিযোগ করেছেন, প্রচারণার শুরু থেকে তিনি কার্যত গৃহবন্দি হয়ে আছেন। তাঁর কর্মীদের প্রচারণায় বাধা দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ একতরফা প্রচারণা চালাচ্ছে। "সেনাবাহিনী মাঠে নামার পরও তার এলাকায় পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি" - বলছেন তিনি। "আমি গত ১০দিন যাবত পুলিশ আমাকে নিরাপত্তার নামে গৃহবন্দী করে রেখেছে। আমার কোন কর্মী আসতে পারে না। আসলেই তারা গ্রেফতার করে। আর সেনাবাহিনী নেমেছে শুনেছি। কিন্তু এই এলাকায় উত্তেজনা থাকলেও আর্মি দেখিনি।" বিবিসি-র সাথে কথা বলছেন একজন ভোটার এই চাঁদপুর-২ আসনে তাঁর মুল প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী নুরুল আমীন রুহুল একতরফা প্রচারণা অব্যাহত রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। "যারা যার অবস্থান থেকে প্রার্থীরা প্রচারণা চালাচ্ছেন। এখানে সুন্দর পরিবেশে প্রচারণা চলছে" - বলছেন তিনি। সেনাবাহিনী নামার পরও বিরোধীদল বিএনপির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কয়েকটি জায়গায় তাদের প্রচারণায় হামলার অভিযোগ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ তা অস্বীকার করেছে। এছাড়া সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে প্রধান দুই দলই বিভিন্ন বক্তব্য তুলে ধরেছে। বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বলেছেন, সেনাবাহিনী নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে বলে তারা আশা করেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগে নেতারা বলেছেন, সেনাবাহিনী মোতায়েন নিয়ে কারও উচ্ছ্বসিত হওয়ার কিছু নেই। তারা উল্লেখ করেছেন, সেনাবাহিনী নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: অন্যেরা ব্যর্থ হলেই শুধু সেনাবাহিনী 'এ্যাকশনে যাবে' নির্বাচনী সহিংসতা ভোটারদের ওপর কী প্রভাব ফেলছে প্রতিদিনই হচ্ছে সহিংসতা: কি করছে নির্বাচন কমিশন? বাংলাদেশে ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনের ছয় দিন আগে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী - যারা কাজ করবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্যে প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য 'স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে।' +text: ঢাকায় একটি বিশেষ অপারেশনের সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা দুই দেশের সীমান্ত এলাকার যে জিরো লাইনের ওপর কয়েক হাজার রোহিঙ্গা অনেকদিন ধরে আটকে আছে, সেখানে গত বৃহস্পতিবার থেকেই মিয়ানমারের সেনা তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। প্রতিবেশী দেশ দুটো যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে এমন কোন সম্ভাবনা কিংবা আশঙ্কা অবশ্য বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা দেখছেন না। দেশ দুটোর সামরিক শক্তির একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র আগে পাওয়া যায়নি। তবে সম্প্রতি বিশ্বের ১৩৩টি দেশের সামরিক শক্তির যে তালিকা প্রকাশ করেছে গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার, তাতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের শক্তির একটি ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। আরো পড়ুন: ভারত-পাকিস্তানের সামরিক শক্তির পার্থক্য কতটা? বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর কী ধরণের সরঞ্জাম আছে? মুসলিমদের ওপর বৌদ্ধদের সহিংসতা ঠেকাতে হিমশিম শ্রীলঙ্কা প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিয়ানমারের তুলনায় জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ বেশ এগিয়ে থাকলেও সামরিক দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ইনডেক্স ২০১৭ অনুযায়ী, বিশ্বে সামরিক শক্তিতে মিয়ানমারের অবস্থান যেখানে ৩১তম, বাংলাদেশের অবস্থান সেখানে ৫৭। তবে তাদের এই তালিকায় শুধুমাত্র সামরিক লোকসংখ্যা, অস্ত্র, যানবাহনের মতো বিষয়ই বিবেচনায় আসেনি - এর সঙ্গে যোগ হয়েছে জনসংখ্যা, ভৌগলিক অব���্থান, শিল্প, কর্মক্ষমতার মতো নানা বিষয়। দুই দেশের মধ্যে সামরিক শক্তির প্রধান পার্থক্যগুলো কোথায়? সৈন্য সংখ্যা: এই ইনডেক্স অনুযায়ী, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে নিয়মিত মোট কর্মীর সংখ্যা এক লাখ ৬০ হাজার, অন্যদিকে মিয়ানমারের বাহিনীতে রয়েছে চার লাখ ছয় হাজার। বাংলাদেশের সংরক্ষিত বাহিনীতে রয়েছে ৬৫ হাজার কর্মী, মিয়ানমারের রয়েছে এক লাখ ১০ হাজার। প্রতিরক্ষা বাজেট: বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাজেট যেখানে ১৫৯ কোটি মার্কিন ডলার, সেখানে মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা বাজেট ২৪০ কোটি ডলার। মিয়ানমারে টহলরত সেনাবাহিনীর সদস্যরা এয়ারক্রাফট: এই ইনডেক্স অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট এয়ারক্রাফট রয়েছে ১৬৬টি আর মিয়ানমারের রয়েছে ২৪৯টি। বাংলাদেশের যুদ্ধবিমান ৪৫টি আর মিয়ানমারের রয়েছে ৫৬টি। অ্যাটাক এয়ারক্রাফট রয়েছে বাংলাদেশের ৪৫টি আর মিয়ানমারের ৭৭টি। বাংলাদেশের হেলিকপ্টার রয়েছে ৬১টি আর মিয়ানমারের রয়েছে ৮৬টি। বাংলাদেশের কোন অ্যাটাক হেলিকপ্টার না থাকলেও মিয়ানমারের রয়েছে ৯টি। সামরিক যান: প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর মোট ট্যাংক রয়েছে ৫৩৪টি। অন্যদিকে মিয়ানমারের রয়েছে ৫৯২টি। সাঁজোয়া যান বাংলাদেশের রয়েছে ৯৪২টি আর মিয়ানমারের রয়েছে ১৩৫৮টি। আর্টিলারি: বাংলাদেশের রয়েছে ১৮টি স্বয়ংক্রিয় আর্টিলারি গান এবং ৩২টি রকেট প্রজেক্টর। মিয়ানমারের রয়েছে ১০৮টি স্বয়ংক্রিয় আর্টিলারি আর একই পরিমাণ রকেট প্রজেক্টর। নৌযান: যেখানে মিয়ানমারের ন্যাভাল অ্যাসেট রয়েছে ১৫৫টি, সেখানে বাংলাদেশের এমন সরঞ্জামের সংখ্যা ৮৯। ' দুই দেশের কারোই বিমানবাহী রণতরী কিংবা ডেস্ট্রয়ার নেই। এই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সাবমেরিন নেই লেখা হলেও কিছুদিন আগে অবশ্য বাংলাদেশ দুটি সাবমেরিন কিনেছে। ফ্রিগেটের সংখ্যায় বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে। মিয়ানমারের পাঁচটি থাকলেও বাংলাদেশের রয়েছে ৬টি ফ্রিগেট। এছাড়া মাইন ওয়রফেয়ার ক্রাফট এবং বাণিজ্যিক নৌযানের দিক থেকে মিয়ানমারের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী, সামরিক দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। এরপরেই রয়েছে রাশিয়া, চীন ও ভারত। শীর্ষ ১০দেশের মধ্যে আরো রয়েছে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জাপান, তুরস্ক, জার্মানি আর মিশর��� আরো পড়তে পারেন: সম্রাট আওরঙ্গজেব কি সত্যিই হিন্দু বিদ্বেষী ছিলেন? মাদ্রাসায় কেন পুড়লো হাজারো মোবাইল ফোন? সামাজিক মাধ্যম মেয়েদের কতটা স্বাধীনতা দিয়েছে? বার্তাবাহী বোতলটি সমুদ্রে ছোঁড়া হয় ১৩২ বছর আগে বাংলাদেশ সীমান্তে কিছুদিন আগে মিয়ানমার সেনা সমাবেশ করার পর পতাকা বৈঠক করে দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী এবং ঐ বৈঠকে বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে সেনা সরিয়ে নিতে বলে মিয়ানমারকে। +text: ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় পুলিশ বক্সের সামনে বোমা হামলায় অন্তত দুইজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। শনিবার রাত সোয়া ৯টার দিকে ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় পুলিশ বক্সের সামনে ওই বোমা হামলায় অন্তত দুইজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তাদের একজন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের প্রটোকলের সদস্য। হামলার কয়েক ঘণ্টা পরে একটি বার্তায় সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ বলছে, ঢাকায় পুলিশের ওপর ওই বোমা হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে আইএস গ্রুপ। এর আগের হামলা দুইটিরই দায়িত্ব স্বীকার করেছিল এই জঙ্গি গোষ্ঠীটি। মালিবাগ ও গুলিস্তানে চালানো ওই হামলা দুইটির সঙ্গেও মিল দেখতে পাচ্ছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। 'আইএসের' দাবি নাকচ করলেও সেসব হামলার পেছনে কারা রয়েছে, তা এখনো বের করতে পারেনি পুলিশ। আরো পড়ুন: পুলিশ কেন 'আইএস' হামলার লক্ষ্যবস্তু? 'টাকার সঙ্কট, তাই পুলিশের ওপর হামলা' জামিনে পলাতক 'জঙ্গি'রা কতটা ঝুঁকি তৈরি করছে? সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ একটি টুইটার বার্তায় জানিয়েছে, সায়েন্স ল্যাব এলাকার ওই বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস। ধানমণ্ডি অঞ্চলের উপ পুলিশ কমিশনার আবদুল্লাহেল কাফি বিবিসিকে বলেছেন, সোয়া নয়টার দিকে সায়েন্স ল্যাব মোড়ে পুলিশ বক্সের সামনে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীদের সনাক্ত করতে পুলিশ এর মধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। তবে এ ঘটনা আইএসের দাবির ব্যাপারে পুলিশের কাছে তথ্য নেই বলে তিনি জানান। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া সাংবাদিকদের বলেছেন, পুলিশকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে। সায়েন্স ল্যাব মোড়ের পুলিশ বক্স টার্গেট করে ওই হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করছি। আগের হামলার সঙ্গে এই হামলার মিল রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। পুলিশের দুই সদস্যকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ���রা হয়েছে। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে বলেছেন, সন্ধ্যার পর তিনি সীমান্ত স্কয়ারে একটি অনুষ্ঠান যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। এ সময় সায়েন্স ল্যাব মোড়ে যানজটে পড়লে তার প্রটোকলের দায়িত্বে থাকা একজন এএসআই ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে যান। সে সময় যানজট ছেড়ে দেয়ায় তার গাড়ি চলে আসে। একটু পরেই তিনি জানতে পারেন যে, বোমা হামলায় ওই পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: 'এখন আমার কী হবে'- নাগরিকত্ব হারানো জমিরন ট্রেনের ছাদে উঠলে ছাড় নেই, রোববার থেকে কড়া দৃষ্টি আসামের নাগরিক পঞ্জী থেকে বাদ ১৯ লক্ষ মানুষ সরকার কেন চায় কর্মকর্তাদের পরিবার সাথেই থাকুক? শনিবার রাতে ঢাকার সায়েন্স ল্যাব এলাকার পুলিশ বক্সের সামনে বোমা হামলার ঘটনাটি ঘটে ঘটনাস্থলে পুলিশ মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ জাভেদ পাটোয়ারি সাংবাদিকদের বলেছেন, ইম্পোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণে পুলিশের দুই সদস্য আহত হয়েছেন। মালিবাগ আর গুলিস্তানের হামলার সঙ্গে এর সাদৃশ্য আছে। এর আগে গত ২৪শে জুলাই ঢাকার খামারবাড়ি ও পল্টন এলাকায় পুলিশের দুইটি চেকপোস্টের সামনে থেকে দুইটি বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। সে ঘটনার পর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের উপ কমিশনার মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, "এর পেছনে আইএস, জেএমবি বা কোন সংঘবদ্ধ দল জড়িত কি-না - তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত চলছে।" তার আগে ২৬শে মে মালিবাগে পুলিশের বিশেষ শাখার সামনে একটি পিকআপে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। ২৯শে এপ্রিল গুলিস্তানে ট্রাফিক পুলিশকে লক্ষ্য করে হাতবোমা ছোড়া হলে তিনজন পুলিশ সদস্য আহত হন। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক জঙ্গি তৎপরতা নজরদারি প্রতিষ্ঠান সাইট ইন্টেলিজেন্স জানিয়েছে, বাংলাদেশের ঢাকায় পুলিশের ওপর বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট গ্রুপ। +text: ভ্যাকসিন আবিষ্কারে কাজ চলছে কেউ হয়তো আশা করছেন কোনো একটি ঔষধ কোম্পানি দ্রুত এর ভ্যাকসিন বা টিকা বা প্রতিষেধক বাজারজাত করে মিলিয়ন বা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করে নেবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো এটা হচ্ছে না এখনই। বৈশ্বিক ভ্যাকসিন বাজার চলতি বছরে ছয় হাজার কোটি ডলারে দাঁড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে সেখানে বড় ধরণের লাভের কোনো নিশ্চয়তা নেই। "একটি টিকা বা প্রতিষে���ক সফলভাবে বের করে আনা বেশ জটিল কাজ। সাধারণত এর জন্য অনেক সময় ও অর্থ দরকার হয়," বলছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বায়োটেকনোলজি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান লংকার ইনভেস্টমেন্ট এর প্রধান নির্বাহী ব্রাড লংকার। "কোম্পানিগুলোতে ভ্যাকসিন তৈরি করার মতো পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ নেই।" বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: করোনাভাইরাসে হওয়া রোগের নতুন নাম 'কোভিড-১৯' করোনাভাইরাস: লক্ষণ, প্রতিরোধ ও আরো দশটি তথ্য করোনাভাইরাসের টিকা আছে? আক্রান্তরা পুরো ভালো হচ্ছেন? করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ এখনো অনেক দূরে বৈশ্বিক ভ্যাকসিন বা টিকা শিল্পে বড় নাম গুলো যেমন পিফিজার, মার্ক, গ্লাক্সোস্মিথ, স্যানোফি এবং জনসন অ্যান্ড জনসন। গত বছর বিশ্বব্যাপী টিকা বিক্রি হয়েছিলো পাঁচ হাজার চারশো কোটি ডলার যা ২০১৪ সালের দ্বিগুণ। আর এ বৃদ্ধির মূল কারণ হলো ইনফ্লুয়েঞ্জা, সোয়াইন ফ্লু, হেপাটাইটিস ও ইবোলার মতো রোগগুলো। "কেউ ভাবতে পারে যে এবারের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার মতো অর্থ এই শিল্পের আছে। কিন্তু চারটি সেরা কোম্পানির কেউই এ বিষয়ে কোনো আগ্রহ দেখায়নি," বলছিলেন আমস্টার্ডমের ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টার গ্রনিনজেনের মেডিসিন ল' অ্যান্ড পলিসি বিষয়ক পরিচালক ড: এলেন টি হোয়েন। বড় কোম্পানিগুলোর বাইরে কিছু ছোটো ঔষধ কোম্পানি চেষ্টা করছে কোভিড-১৯ এর টিকা আবিষ্কারের জন্য, যে ভাইরাসে এরই মধ্যে প্রাণ হারিয়েছে এক হাজারের বেশি মানুষ। জিলিড, যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বায়োটেক প্রতিষ্ঠান যারা এন্টি এইচআইভি ড্রাগ তৈরি করে তারা ঘোষণা করেছে যে তারা রেমডিসিভির নামে একটি ঔষধ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাবে। অন্যদিকে কালেট্রা চীনে একজন রোগীকে নিয়ে গবেষণা করছে। তবে দুটি পরীক্ষাতেই বিদ্যমান ঔষধই ব্যবহার করা হচ্ছে। ভ্যাকসিন বের করে ব্যাপক অর্থ আয়ের নিশ্চয়তা নেই কোম্পানিগুলোর জন্য "জিলিড বা অ্যাবভাই এর মতো বড় কোম্পানি চিকিৎসার অংশ হিসেবে বিদ্যমান ঔষধ ব্যবহার করবে কিন্তু এতে করে এসব বড় কোম্পানি স্টক মার্কেটে কতটা সুবিধা পাবে তা অনিশ্চিত," লংকার যোগ করেন। কোভিড-১৯ এর জন্য টিকা খুঁজতে কোম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করতে চ্যারিটেবল ডোনেশন ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মধ্যে একটি হলো অলাভজনক সংস্থা দা কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ারডসেন ইনোভেশন বা সিইপিআই। এর যৌথ প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে আছ��� নরওয়ে ও ভারত সরকার, বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এবং দা ওয়েলকাম ট্রাস্ট। সিইপিআই ইনোভিও ফার্মাসিউটিক্যালস ও মডার্নার ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্ট কর্মসূচিতে সহায়তা করছে। আর বড়দের মধ্যে জিএসকে তাদের হাতে থাকা প্রযুক্তি দিয়ে সিইপিআইকে সহযোগিতার কথা জানিয়েছে। টিকার ক্ষেত্রে বিক্রির অনুমতি পাওয়ার আগে অনেক সময় লম্বা সময় ধরে হাজার মানুষের ওপর পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। যদিও ২০০২ ও ২০০৩ সালে সার্সের সময় কোনো টিকাই আনা যায়নি এবং সার্সের জন্য এখনো কোনো টিকা নেই। ইবোলার ক্ষেত্রে প্রথম টিকা বাজারে এনেছিলো মার্ক এবং ২০১৫ সালে পশ্চিম আফ্রিকায় সেটি সফল হয়েছিলো। তবে মার্কের ভ্যাকসিনকে যুক্তরাষ্ট্র গত বছর পর্যন্ত অনুমোদন দেয়নি। ২০১৯ সালে কঙ্গোতে ইবোলার আরেকটি ভ্যাকসিন এনেছেন জনসন অ্যান্ড জনসন। পাঁচ বছর লেগেছিলো ইবোলার টিকা বের করতে যুক্তরাষ্ট্রের ইবোলা রেসপন্স কর্মসূচির সমন্বয়ক রোনাল্ড ক্লেইন বলছেন, "আমরা কোম্পানির জন্য কাজ করি না। তবে এটি সত্য যে তাদের অনেকে ইবোলার ভ্যাকসিন বের করতে গিয়ে অনেক লোকসানের মুখে পড়েছে"। তবে ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হলেও রেগুলেটরির অনুমোদন পেতে অনেক সময় কয়েক বছর লাগে কারণ কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হতে চান যে এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। তবে এটি অবশ্য অনুমোদিত ঔষধের ক্ষেত্রেও হতে পারে। ২০০৯-১০ সালে সোয়াইন ফ্লু'র সময় প্রায় ষাট লাখ মানুষকে গ্লাক্সোস্মিথক্লেইনের পানডেমরিক্স ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। পরে এমন কিছু সমস্যার জন্য বিপুল পরিমাণ ভ্যাকসিন বাজার থেকে উঠিয়ে নেয়া হয়েছিলো। কারণ ভ্যাকসিনটি নেয়ার পর একজন মানুষ দিনে অনেক বার ঘুমিয়ে পড়তো অর্থাৎ স্লিপিং ডিজঅর্ডার সমস্যায় আক্রান্ত হতো। ইউএস ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজের ডিরেক্টর ড: অ্যান্থনি ফৌচি বলছেন, কোনো বড় কোম্পানিই এগিয়ে এসে বলেনি যে তারা কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন তৈরি করবে। "এটা খুব হতাশাজনক"। তার মতে কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন আসতে অন্তত এক বছর সময় লাগবে। ওদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আশা করছে দেড় বছরের মধ্যে এ ভ্যাকসিন বাজারে আসবে। ঔষধ কোম্পানিগুলো এর আগে জনস্বাস্থ্য সংকটের সময়ে ভ্যাকসিন তৈরি করতে এগিয়ে এসেছিলো। "যখন আমরা ইবোলা নিয়ে কাজ করলাম তখন একটি এসেছিলো। কিন্তু এখন তারা নেই। এখন ���ড় কোম্পানি পাওয়া অনেক কঠিন হবে"। মিস্টার লংকার বড় কোম্পানিগুলোর মানসিকতার ওপর দৃষ্টি দিয়ে বলেন, "অধিকাংশ কোম্পানি ও বিনিয়োগকারী দীর্ঘসময়ের জন্য এর মধ্যে থাকতে চায়না"। বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি করা করোনাভাইরাস যার নাম এখন কোভিড-১৯। +text: পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ. কে. আব্দুল মোমেন এমন ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন যাদের কোনো ডকুমেন্ট নেই তাদের কেন বাংলাদেশ পাসপোর্ট দেবে। ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্য একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, পাসপোর্ট দেয়া না হলে সৌদি আরবে কর্মরত অভিবাসী বাংলাদেশিদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে প্রচ্ছন্ন হুমকি দেয়া হচ্ছে। তবে এব্যাপারে সৌদি সরকারের বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেয়া বা না দেয়ার ইস্যুতে দুই দেশের সম্পর্কে কোন নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে কিনা - এই প্রশ্নও সম্প্রতি আলোচনায় এসেছে। একইসাথে সৌদি আরবে থাকা কমপক্ষে ২২ লাখ বাংলাদেশির জন্য বিষয়টি কোন হুমকি তৈরি করবে কিনা - এনিয়েও নানা আলোচনা চলছে। পাসপোর্ট ইস্যুতে কী আলোচনা? সৌদি আরবে বাংলাদেশের দূতাবাসে নতুন একজন রাষ্ট্রদূত যোগদান করেছেন অল্প কিছুদিন আগে। তার সাথে প্রথম বৈঠকেই সৌদি কর্তৃপক্ষ সেখানে থাকা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেয়ার প্রস্তাব উত্থাপন করে ব পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেছেন, "সৌদি আরব বলেছে যে তাদের দেশে স্টেটলেস লোক তারা রাখে না। তাদের দেশে থাকা ৫৪,০০০ রোহিঙ্গার কোন পাসপোর্ট নাই। তারা বলেছে, তোমাদের বাংলাদেশ থেকেতো রোহিঙ্গা অনেকে এখানে এসেছে, সুতরাং তোমরা যদি এদের পাসপোর্ট ইস্যু করো।" তিনি আরও বলেছেন, "আমরা বলেছি যে, ওদের যদি আগে কখনও বাংলাদেশের পাসপোর্ট থাকে কিংবা যদি কোন প্রমাণ দেখাতে পারে, তাহলে আমরা অবশ্যই তাদের পাসপোর্ট ইস্যু করবো। অন্যথায় আমরা কিভাবে করি? তখন তারা বলেছে, পাসপোর্ট ইস্যুর অর্থ এই নয় যে আমরা তাদের তোমাদের দেশে বিতাড়িত করবো। তারা বলেছে, যেহেতু স্টেটলেস লোক সৌদি আরবে রাখা হয় না, সেজন্য পাসপোর্ট দিতে বলছি।" "যাদের বাংলাদেশের কোন ডকুমেন্ট নাই, তাদের আমরা পাসপোর্ট দেবো কেন? আমরা তাদের বলেছি, তোমরা মিয়ানমারের সাথে এটা নিয়ে কথা বলো। তো, এনিয়ে আলোচনা চলছে।" পররাষ্ট্রমন্ত্রী মি: মোমেনের বক্তব্য হচ্ছে, সৌদি আরবই স্বত:প্রণোদিত হয়ে ৫৪,০০০ রোহিঙ্গাকে তাদের দেশে আশ্রয় দিয়েছিল। "১৯৭৭ সালে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে নির্যাতিত হচ্ছিল, তখন তৎকালীণ সৌদি বাদশাহ ঘোষণা করলেন যে, তিনি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবেন। তাই অনেক রোহিঙ্গা সৌদি আরবে যায়। এরা ৩০ বা ৪০ বছর ধরে ঐ দেশে আছে। ওদের ছেলে মেয়ের সেখানে জন্ম হয়েছে। কিন্তু ওদের কোন পাসপোর্ট নাই।" মি: মোমেন জানান "এর আগে ৪৬২ জন রোহিঙ্গাকে যারা সৌদি আরবে জেলে আছে, তাদের বাংলাদেশে আনার জন্য বলেছিল। সেখানে বাংলাদেশের দূতাবাসের কর্মকর্তারা যাচাই করে দেখেছেন যে জেলে থাকাদের মধ্যে ৭০ বা ৮০ জনের মনে হয় বাংলাদেশের পাসপোর্ট ছিল। বাকিদের ব্যাপারে আমরা কিছু জানি না। যাদের বাংলাদেশের পাসপোর্ট ছিল, আমরা তাদের ট্রাভেল ডকুমেন্ট দিয়ে নিয়ে আসবো। কিন্তু যাদের নাই, তাদের আমরা আনবো কেন?" এই প্রশ্ন তিনি করেন। একজন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন মনে করেন, সৌদিতে থাকা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের পাসপোর্ট দেয়া হলে, সেটা মিয়ানমার অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করার সুযোগ পাবে। তিনি বলেন, "মিয়ানমার তখন বলতে পারবে যে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের লোক। ফলে সৌদির প্রস্তাব অনুযায়ী পাসপোর্ট দেয়া ঠিক হবে না। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যেও এমন ইঙ্গিত আসছে।" বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ. কে. আব্দুল মোমেন বলছেন অন্য যে কোন সময়ের তুলনায় এখন সৌদি আরব এবং বাংলাদেশের সম্পর্ক ভাল। আরও পড়তে পারেন: বিষয়টি এখন উঠছে কেন? পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে সৌদি আরবে বাংলাদেশের দূতাবাসে রাষ্ট্রদূত ছিলেন গোলাম মসিহ। নতুন রাষ্ট্রদূত সেখানে যোগ দেয়ার পর তিনি দেশে ফিরেছেন। মি. মসিহ বলেছেন, "বিভিন্ন সময় যখন অবৈধ লোকজন ফেরত পাঠানোর প্রশ্ন আসে, তখন তারা রোহিঙ্গা হিসাবেতো বলে না। তারা বলে তোমাদের বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে এসেছিল, তখন আমরা যাচাই করে ব্যবস্থা নেই। এটা চলমান বিষয়।" একইসাথে তিনি বলেন, "রোহিঙ্গা যে ইস্যুটা ইদানিং বলছে, এটা কোন সিরিয়াস সমস্যা হবে না।" তবে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বিষয়টাকে দেখেন ভিন্নভাবে। তিনি মনে করেন, সৌদি আরবের অর্থনীতি আগের মতো শক্তিশালী নেই। এখন রোহিঙ্গাদের নিয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষের এই অবস্থানের ক্ষেত্রে সেটা একটা কারণ হতে পারে। "এখনকার অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে এমন হতে পারে যে তাদের ওখানে এমপ্লয়মেন্ট বা কাজের সুযোগ অনেক কমে আসবে। তারা এটাকে একটা সুযোগ হিসাবে দেখছে যাতে এ রকম চাপ দিয়ে কিছু বিদেশি শ্রমিক কমিয়ে ফেলা যায়।" সৌদিতে ২২ লাখ বাংলাদেশি চুয়ান্ন হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশের পাসপোর্ট দেয়া না হলে সৌদি আরবে কর্মরত প্রায় ২২ লাখ বাংলাদেশির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার একটা আশংকা করা হচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ. কে. আব্দুল মোমেন বলছেন, "সেখানে উস্কানি দেয়ার যথেষ্ট দুষ্ট লোক আছে। কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌদি কর্তৃপক্ষের ভাল সম্পর্কের কারণে সেখানে এখন আমাদের সবচেয়ে বেশি শ্রমিক কাজ করছে। যা প্রায় ২২ লক্ষ। কিন্তু অন্যান্য দেশ যারা আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী, তারা কিন্তু খুব অসন্তুষ্ট। তাদেরও লোকজন সেখানে আছে, তো তারা বিভিন্ন রকমের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।" সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলছেন, এর আগেও দু'একবার সৌদি আরব রোহিঙ্গাদের ইস্যু তুলেছে, কিন্তু তারা বাংলাদেশের নাগরিক নয় - এটাই বাংলাদেশের অবস্থান ছিল। কিন্তু তার কোন প্রভাব শ্রমবাজারে পড়েনি। সাবেক রাষ্ট্রদূত মি. মসিহ মনে করেন, রোহিঙ্গা ইস্যু সেখানে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। তবে বিশ্লেষকদের অনেকে বলেছেন, ২২ লাখ শ্রমিকের বিষয় যখন আসবে, তখন সৌদি চাপের মুখে বাংলাদেশ অবস্থানে অনড় থাকতে পারবে কিনা - সেই সন্দেহ তাদের রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ে শিগগিরই দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ে একটি বৈঠক হতে পারে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ৫৪ হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশের পাসপোর্ট দেয়া না হলে সৌদি আরবে কর্মরত প্রায় ২২ লাখ বাংলাদেশির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার একটা আশংকা করা হচ্ছে। দুই দেশের সম্পর্ক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য হচ্ছে, অন্য যে কোন সময়ের তুলনায় সৌদি আরব এবং বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন ভাল। গোলাম মসিহর বক্তব্যও একই রকম। কিন্তু এখন সৌদি আরবের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা ইস্যু সামনে আনার বিষয়কে সন্দেহের চোখে দেখছেন সাবেক কূটনীতিকদের অনেকে। মি. হোসেন বলেছেন, "এই সময় তাদের এই চাপ প্রয়োগ, এটা খুবই দু:খজনক। কারণ সৌদি আরব নিজেদের মুসলিম বিশ্বের নেতা হিসাবে দাবি করে। সেখানে তারা দেখছে যে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারের মধ্যে সঙ্কট চলছে। তখন তারা ৫৪,০০০ রোহিঙ্গাকে পাসপোর্ট দেয়ার কথা বলছে।" একইসাথে তিনি বলেন, সৌদি আরবের কোন বিষয়েই সমর্থনের কোন অভাব বা ঘাটত��� দেখায়নি বাংলাদেশ। সেখানে দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি হওয়ার কোন কারণ নেই বলে তিনি মনে করেন। সৌদি আরব সে দেশে অবস্থানরত কমপক্ষে ৫৪,০০০ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশের পাসপোর্ট দিতে যে চাপ দিচ্ছে, তাতে বাংলাদেশ রাজি নয়। +text: করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা একজনের কবরের সামনে মোনাজাত করছেন কয়েকজন স্বজন। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। রোববার বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশে মোট ১১,০৫৩ জনের মৃত্যু হলো। এ সপ্তাহের শুরুতেই বাংলাদেশে প্রতিদিন একশোজনের বেশি মানুষ কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। টানা চারদিন মৃত্যুর হার শতাধিক ঘরের ওপরে থাকার পর নীচে নেমে আসে। তবে শনাক্তের সংখ্যা কিছুটা কমেছে। আরও পড়ুন: বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে ভিন্ন তথ্য বাংলাদেশে কি করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদন সম্ভব? সিরামের কাছ থেকে টিকা আনার ব্যাপারে যা বললেন বেক্সিমকোর এমডি বাংলাদেশে কাল থেকে করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজের টিকাদান বন্ধ গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে ২,৯২২ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশে মোট শনাক্ত হলেন ৭ লাখ ৪৫ হাজার ৩২২ জন। ২১ হাজার ৯২২ টি নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্তের এসব তথ্য জানা গেছে। কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে গত কয়েকদিনের মৃত্যুর পরিসংখ্যান: চুক্তি অনুযায়ী সিরাম ইন্সটিটিউট টিকা না দেয়ায় সংকটে পড়েছে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪,৩০১ জন আর বাংলাদেশে মোট সুস্থ হয়েছেন ৬ লাখ ৫৭ হাজার ৪৫২ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরেরর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে নমুনা পরীক্ষার বিচারে শনাক্তের হার ১৩.৩৩ শতাংশ। বাংলাদেশে গত বছরের মার্চের ৮ তারিখে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার তথ্য দিয়েছিলো স্বাস্থ্য বিভাগ। এরপরের দুই মাস দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা তিন অংকের মধ্যে থাকলেও সেটা বাড়তে বাড়তে জুলাই মাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। এরপর বেশ কিছুদিন দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা কমতে কমতে এক পর্যায়ে তিনশোর ঘরে নেমে এসেছিল। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: বাংলাদেশে কাল থেকে করোনাভাইরাসের ��্রথম ডোজের টিকাদান বন্ধ মে মাসে সিরাম ও কোভ্যাক্স থেকে কিছু টিকা পেতে পারে বাংলাদেশ ইন্দোনেশিয়ায় ৫৩ জন ক্রু নিয়ে নিখোঁজ সাবমেরিনটি ডুবে গেছে ভারতের হাসপাতালে অক্সিজেন বিপর্যয়ে আবারো বহু রোগীর মৃত্যু তবে এবছর মার্চের শুরু থেকেই শনাক্তে ঊর্ধ্বগতি শুরু হয়। বাংলাদেশে চারদিন পর আবারো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা একশো পার হয়েছে। +text: মুশতাক আহমেদ। বৃহস্পতিবারে কারাগারের কক্ষে মুশতাক আহমেদ অচেতন হয়ে যাওয়ার পর হাসপাতালে নেয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আকস্মিক এই মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। সেইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই কাজ করবে এই কমিটি। কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই সদস্য হলেন, গাজীপুর জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরী এবং সহকারী কমিশনার উম্মে হাবিবা ফারজানা। তাদেরকে সামনের দুই কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এ ব্যাপারে ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরী জানিয়েছেন যে তারা কাজ শুরু করেছেন। সন্দেহভাজন সব দিকগুলো খতিয়ে দেখে তারা যতো দ্রুত সম্ভব প্রতিবেদন প্রস্তুত করবেন। অন্যদিকে উম্মে হাবিবা ফারজানা জানিয়েছেন, প্রাসঙ্গিক সব বিষয়গুলো খতিয়ে দেখেই তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে এই তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করবেন। শুক্রবার দুপুরে মুশতাক আহমেদের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলেও, তার রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। জেল সুপার গিয়াস উদ্দিন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছিলেন যে, ময়নাতদন্ত রিপোর্টেই পরিষ্কার হবে কী কারণে মুশতাক আহমেদের মৃত্যু হয়েছিল। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন যে, মৃত্যুর কারণ যাই হোক সেটা তদন্ত করা হবে, প্রয়োজনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। আরও পড়তে পারেন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: উদ্বেগ কোথায়? সরকারের সমালোচনা বন্ধ করতেই কি কার্টুনিস্ট ও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা? কার্টুনিস্ট কিশোর ও লেখক মুশতাকের মুক্তি চায় অ্যামনেস্টি দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এদিকে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে গাজীপুরের তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান শাফি মোহায়মেন জানান যে তারা মরদেহের শরীরে দৃশ্যমান কোন আঘাতের চিহ্ন পান নি। মুশতাক আহমেদের চাচাতো ভাইও জানিয়েছেন যে তারা লাশের যতোটুকু অংশ দেখেছেন। সেখানে কোথাও আঘাতের কোন চিহ্ন নেই। কিন্তু মুশতাক হোসেনের এমন অকস্মাৎ মৃত্যুর ঘটনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে শুক্রবার ফেসবুকে এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন তার আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। তিনি সেখানে লেখেন, যে মানুষটি ২৩ তারিখে সিএমএম আদালতে সুস্থ অবস্থায় হাজিরা দিতে এসেছেন, তিনি ২৫ তারিখে মারা যাবেন, সেটা অবিশ্বাস্য। এ ঘটনায় তিনি নিরপেক্ষ কমিটির মাধ্যমে স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। জেল সুপার গিয়াস উদ্দিনের তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে লেখক মুশতাক আহমেদ তার কারাগারের কক্ষে হঠাৎ মাথা ঘুরে পরে যান। এসময় তার কক্ষে থাকা অপর দুইজন চিৎকার করলে, কারাগারের কর্তব্যরতরা, মুশতাক আহমেদকে কারাগারের হাসপাতালে নিয়ে যান। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার। তার পরিস্থিতি দেখে কারা চিকিৎসকরা গাজীপুরের তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। গাজীপুরের ওই হাসপাতালের আউটডোরের চিকিৎসকরা মুশতাক আহমেদকে পরীক্ষা করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তার ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা ছিল "ব্রট ডেড" অর্থাৎ মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। কিন্তু কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছে সেটা ওই সনদে লেখা ছিল না। এ কারণে লাশের সুরতহালের পাশাপাশি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় বলে জানান মি. উদ্দিন। দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে রাত ১০টার দিকে আজিমপুর কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়। মুশতাক আহমেদের কারাগারে মৃত্যুর প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল। মুশতাক আহমেদ এর আগে কখনই তার শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে কোন অভিযোগ করেননি বলে দাবি করেছেন তিনি। তার মতে, মি. আহমেদ মাঝে মাঝে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেতেন। এছাড়া আর কোন শারীরিক জটিলতার বিষয়ে তার জানা নেই। এদিকে শনিবার দ্বিতীয় দিনের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন বামপন্থী ছাত্র সংগঠন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার সেইসঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শাহবাগ থানার সামনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুলিশের লাঠিচার্জে আহত শ��ক্ষার্থী। সরকার এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে বাংলাদেশে ভিন্নমত দমনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে ছাত্রনেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিতর্কিত এই আইন বাতিলের দাবিতে আগামী এক মাস সারাদেশের সব প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনকে সাথে নিয়ে বিক্ষোভ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা। এছাড়া পহেলা মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভ ও ঘেরাও কর্মসূচি এবং তেশরা মার্চ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে ছাত্র সংগঠনগুলো। পোস্টারে লিখে প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। এর আগে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা শুক্রবার সন্ধ্যায় মুশতাক হোসেনের মৃত্যুর প্রতিবাদে ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে মশাল মিছিল বের করলে শাহবাগ মোড়ের কাছে তারা পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এসময় পুলিশ লাঠিচার্জ করলে অন্তত অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এই পুলিশি হামলার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: খাসোগজি হত্যার অনুমোদন দিয়েছিলেন সৌদি যুবরাজ, বলছে যুক্তরাষ্ট্র মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে ১৩ দেশের রাষ্ট্রদূতের উদ্বেগ খাসোগজি হত্যা রিপোর্ট প্রকাশের আগে সৌদি বাদশাহকে বাইডেনের ফোন ব্রিটেনে ফিরতে পারবেন না শামীমা বেগম ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে গাজীপুরের জেলা প্রশাসন। +text: মনে হচ্ছে মেয়েটি দিবা স্বপ্ন দেখছে ধোয়ার কাজ শেষ হলে কিছুটা ধীরেসুস্থে বাগানে সেগুলো শুকাতে দিয়েছি এবং সেসময় গাছে পানিও দিয়েছি। এজন্য সমস্যা হয়নি কারণ লেখাটি শেষ করতে পেরেছি ও সময়মত জমাও দিয়েছি। আমরা সবাই কাজে কর্মে কিছুটা ঢিলেমি করি। কিন্তু দীর্ঘায়িত ঢিলেমি বা অলসতা শরীরের জন্য খারাপ। কারণ এটি মানুষকে চাপে ফেলে দেয়। এমনকি চিকিৎসকের কাছে যেতেও বিলম্ব ঘটায়। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: সব সময় ইতিবাচক থাকার ৬টি উপায় মানসিক উদ্বিগ্নতা সারিয়ে তুলতে পারে দাদা দাদী বই পড়া কি মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে? এখানে আলসেমি বা ঢিলেমি দুর করার কয়েকটি পরামর্শ দেয়া হলো: ১.মোটিভেশনের জন্য শুধু ইচ্ছাশক্তির ওপর নির্ভর নয় ক্রীড়া মনোবিদ ইয়ান টেইলরের মতে মানুষ অনেক সময় মনে করে ইচ্ছাশক্তিই সবকিছু ক��ন্তু এটি সঠিক নয় বলেই মনে করেন তিনি। "ইচ্ছাশক্তি বা আত্মনিয়ন্ত্রণ এক ধরণের মোটিভেশন কিন্তু এটিই সর্বোত্তম নয়," তিনি বলেন। তাই শুধু ইচ্ছা শক্তির ওপর নির্ভর না করে তিনি কাজের খারাপ দিকটিকে উপেক্ষা করাই শ্রেয় বলে মনে করেন। বরং সেটিকে অপরিহার্য ও গুরুত্বপূর্ণ ভাবতে হবে যা হবে লক্ষ্য অর্জনের একটি অংশ। গবেষকরা বলছে লক্ষ্য অর্জনে ইচ্ছাশক্তিই যথেষ্ট নয় ২. ফেলে রাখা কাজে ইতিবাচক কি আছে দেখুন ব্যর্থতার ভয় থেকে কাজ ফেলে রাখছেন? শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুসচিয়া সিরোইস বলছেন, আলস্য বা সময় ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা সমস্যা নয়। "আপনি যদি উদ্বিগ্ন হন এই ভেবে যে আপনি ব্যর্থ হবেন তাহলে কাজ ফেলে রাখার যুক্তি তৈরি হবে"। এটা একটা বাজে চক্র তৈরি করতে পারে: বিলম্ব করার কারণে কাজ করার সময় কমে যাচ্ছে, যা ব্যর্থতার ঝুঁকি বাড়ায় এবং আপনাকে উদ্বিগ্ন করে তোলে। এসব এড়াতে কাজের ইতিবাচক দিকটি দেখুন: হয়তো কিছু শিখবেন বা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি আনন্দ পাবেন। ৩. অগ্রিম পরিকল্পনা আপনি যদি বুঝতে পারেন যে আলসেমি করার একটি প্রবণতা তৈরি হচ্ছে আপনার মধ্যে তাহলে মানসিকভাবে একটি কৌশল নিন। কেউ যদি আপনাকে কোনো সপ্তাহান্তে কোনো মিটিং এর কথা বলে আপনি বরং বলুন মিটিংটি আজ সন্ধ্যায়ই সেরে ফেলার। আমেরিকান মনোবিদ পিটার গলউইটজার এ কৌশলের ওপর ৯৪টি সমীক্ষা পর্যালোচনা করেন। তার মতে যারা কৌশলটি অনুসরণ করে তারা অন্যদের চেয়ে লক্ষ্য অর্জনে ২/৩গুণ বেশি দৃঢ় থাকে। ব্যর্থতার ভয় থামিয়ে দিচ্ছে ? ৪. চাপ কমান যতটা সম্ভব সহজ করুন। সকালে দৌড়ানোর পরিকল্পনা থাকলে আগেই পোশাক ঠিক করে রাখুন। কাজের পরিকল্পনা আগের রাতেই টেবিলে চূড়ান্ত করে রাখুন। তাহলে প্রথমেই আপনি ধারণা পেয়ে যাবেন যে, কি দিয়ে কাজ শুরু করবেন। আর বাধাগুলো, যেমন স্ক্রিনে এলার্ট সরিয়ে ফেলুন। ফোন মিউট করে রাখুন ও সোশ্যাল মিডিয়া থেকে লগ অফ করুন। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: ডেঙ্গুর প্রকোপ কী কমতে শুরু করেছে? গ্যাস সংকটের মধ্যে গ্যাস রপ্তানি কতোটা যৌক্তিক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কীভাবে সেনা প্রশিক্ষণ বদলে দিয়েছে নিষেধাজ্ঞা কী প্রভাব ফেলছে ইরান-বাংলাদেশ সম্পর্কে? আমরা নিজের ওপর যতটা কঠিন হতে পারি, বন্ধুর ওপর ততটা পারিনা ৫. নিজেকে পুরস্কৃত করুন কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাইটলিন য়ুলির নতুন এক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে তাৎক্ষণিক পুরষ্কার কঠোর পরিশ্রম করতে উদ্বুদ্ধ করে। জটিল কাজ ফেলে রাখা থেকেই আলসেমি শুরু হয়- তাই এর পাল্টা ব্যবস্থা হতে পারে যথাসময়ে কাজের পুরষ্কার। পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা বলছে জিমে ব্যায়াম করার সময় অডিও বুকস দিলে তা ভালো কাজ করে। অর্থাৎ সেই তাৎক্ষণিক পুরষ্কার। সুতরাং দেখুন আপনার ক্ষেত্রে কোনটি কাজ করে। সময় ও কোন পন্থায় কাজ করবেন তাও ভাবতে হবে ৬. ভবিষ্যতের জন্য অধিকতর বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে উৎসাহিত করুন অনেকেই আমরা বিশ্বাস করি ভবিষ্যতে আমরা অনেক সময় পাবো। আমরা ভাবি আমরা সামনে আরও গোছানো, আরও অ্যাকটিভ হবো কিংবা এমন জীবন যাপন করবো সেখানে কোনো ভুল ত্রুটি থাকবেনা। এটা অবশ্যই হবেনা। এসব কারণেই অনেক সময় আমরা বুঝিনা কাজ শেষ করতে কত সময় লাগবে। এটাকেই বলে পরিকল্পনাগত ভুল। ভাবতে হবে ফোন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কতটা ব্যবহার করবেন তা নিয়েও ৭. নিজের প্রতি সদয় হোন হাতে থাকা কাজ ঝুলিয়ে রাখলে অনেক সময় নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। যেসব শিক্ষার্থী পরীক্ষার আগে পড়া ঝালিয়ে নিতে পারেনি তাদের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে যারা আলসেমি জনিত কারণে নিজেকে ক্ষমা করে দেয় তারা পরবর্তী সময়ে ভালো করে। সিরোইস বলছেন আমরা নিজের ওপর মাঝে মধ্যে যতটা নির্দয় হই, বন্ধুদের ওপরও ততটা হতে পারিনা। "তাই আমাদের নিজেদের প্রতিও কিছুটা সহমর্মিতা দেখানো উচিত"। যত তাড়াতাড়ি কাজ শেষ হবে তত দ্রুত আনন্দ ৮. নিজের সম্পর্কে কথা বলুন আপনি যে ভাষা ব্যবহার করেন সেটিও একটি ভিন্নতা তৈরি করতে পারে। ইয়ান টেইলর বলছেন এটা কাজ করে কারণ এটা আপনার ও আপনার আচরণের মধ্যে একটা সম্পর্ক তৈরি করে। অপরিহার্য ভাবেই এই লেখাটি লেখার আগে জামা কাপড় ধোয়ার কাজ করেছি, চা তৈরি করেছি, কিছু ইমেইলের উত্তর দিয়েছি, ফেসবুক দেখেছি ও কয়েকটি ব্লগ পড়েছি। +text: পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুর কাছ থেকে অস্বাভাবিক এই প্রশ্নটি আসার পর পোস্টাল সার্ভিস এই হিসেব দিয়েছে। অলিভার গিডিংস এই প্রশ্নটি করেছিলো। সে নিজে বড়ো হয়ে একজন নভোচারী হতে চায়। ডাক বিভাগের কাছে এই শিশুটির প্রশ্ন ছিলো- আমি যদি মঙ্গল গ্রহে একটি চিঠি পাঠাতে চাই তাহলে তার জন্যে কতো খরচ পড়বে? প্রশ্নটি করা হয়েছিলো রয়্যাল মেইলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সহযোগিতা নিয়ে এই হি��েবটি তৈরি করেছে রয়্যাল মেইল। ডাক বিভাগ বলছে, লাল ওই গ্রহটিতে স্বাভাবিক ওজনের একটি চিঠি পাঠাতে খরচ হবে প্রায় সতেরো হাজার ডলার। এই পৃথিবী থেকে মঙ্গল গ্রহের দূরত্ব প্রায় ৫৫ মিলিয়ন কিলোমিটার। ভাবুনতো এই হিসেব পাওয়ার পর ডাক বিভাগের কাছে শিশু অলিভারের উত্তর কি ছিলো? অলিভারের বিস্ময় - এতো স্ট্যাম্প লাগবে! “ওয়াও! এতো অনেক টাকা! এজন্যে এত্তোগুলে ডাকটিকেট লাগবে!” অলিভারের মা জানিয়েছেন, তার সন্তান সবসময়ই খুব কৌতূহলী। “মহাকাশ, তারকামণ্ডলী আর গ্রহ নক্ষত্রের বিষয়ে তার প্রচুর আগ্রহ।” রয়্যাল মেইলের কাছ থেকে এরকম এক জবাব পেয়ে মহা খুশি অলিভার। মঙ্গল গ্রহে চিঠি পাঠাতে কতো খরচ করতে পারে তার একটি হিসেব দিয়েছে ব্রিটিশ ডাক বিভাগ। +text: কাল থেকে ভোটগ্রহণ শুরু। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট অভিযোগ তুলেছে কারচুপি করে নির্বাচনে জয়লাভের ছক কেটেছে আওয়ামী লীগ। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন ভোট কারচুপি করে নির্বাচনে জেতার কোন অভিপ্রায় তার সরকারের নেই। কিন্তু ভোটে কারচুপির যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে সেই কারচুপির সুযোগ কতটা রয়েছে। এ ব্যাপারে সাবেক নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, নির্বাচনের অনেক ধাপেই এই কারচুপির আশঙ্কা থাকে। তিনি বলেন, "এ পর্যন্ত বিভিন্ন নির্বাচনে হুমকি ধমকি থেকে শুরু করে ব্যালট কারচুপি বিশেষ করে ভোটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ এসেছে সবচেয়ে বেশি।" সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। আরও পড়তে পারেন: ভোট গ্রহণের দিনের নিরাপত্তা পরিকল্পনা কী? অসম প্রচারণার শেষে ভোটের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখে বাংলাদেশের নির্বাচন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর ভূমিকা: এক্ষেত্রে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার ভূমিকাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন তিনি। তার মতে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একজন প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে অনেক ক্ষমতা দেয়া হয়। এখন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা যদি সেই ক্ষমতা প্রয়োগ না করেন, বা তাকে বল প্রয়োগের মাধ্যমে সেই সুযোগ দেয়া না হয়, তাহলে তাকে যে উদ্দেশ্যে রাখা সেটা সফল হয়না। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এই কেন্দ্রগুলোকে কড়া পাহাড়ার মধ্যে রাখার কথা জানালেও এমনটা ���েন হয়। বিবিসি বাংলার এমন প্রশ্নের জবাবে এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, মূলত পোলিং কর্মকর্তা এবং প্রিজাইডিং কর্মকর্তা বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষপাত-মূলত দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই এমনটা হয়ে থাকে। ফাইল ফটোতে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা ব্যালট বাক্স ও নির্বাচনের সামগ্রী পাহাড়া দিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ব্যালট বাক্স নিয়ে কারচুপি: এছাড়া ব্যালট বাক্স নিয়ে কারচুপির কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, আগে যেসব অভিযোগ আসতো তারমধ্যে একটি হল ভোট গ্রহণের আগের রাতে ব্যালট বাক্সগুলো পূর্ণ করে দেয়া। তবে এখন স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স আসায় সেটা সম্ভব হয়না। বর্তমানে দেশের প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে একটি করে বাড়তি ব্যালট বাক্স যুক্ত করা হয়। যেন দুর্ঘটনায় কোন ব্যালট বাক্স ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেটাকে পাল্টানো যায়। এই বাড়তি ব্যালট বাক্সটি প্রিজাইডিং কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে থাকে। তবে ইদানীং যে অভিযোগ ওঠে সেটা হল যে, আগের রাতেই এই বাড়তি ব্যালট বাক্সটি দখলে নিয়ে ব্যালট পেপারে পূর্ণ করা হয়। নির্বাচনে সহিংসতা এড়াতে প্রতিটি কেন্দ্রে নিয়োজিত থাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এজেন্ট ইস্যুতে কারচুপি: এজেন্ট ইস্যুতেও ভোট কারচুপির সুযোগ থাকে বলে জানান এম সাখাওয়াত হোসেন। মি. হোসেন বলেন, "আমি এমনও শুনেছি যে প্রতিপক্ষের এজেন্টকে ভোটকেন্দ্রে ঢুকতেই দেয়া হয়নি।" এই এজেন্ট না থাকলে, বুথের ভেতরে ব্যালট পেপার ছিনতাই এবং সেগুলোয় সিল দিয়ে রেখে দেয়ার সুযোগ থাকে। মূলত পোলিং কর্মকর্তা এবং প্রিজাইডিং কর্মকর্তার কারসাজিতে এটা করা হয় বলে জানান তিনি। যদিও এ ধরণের ঘটনাগুলো হাতে গোনা কয়েকটি কেন্দ্রেই ঘটে বলে মন্তব্য করেন তিনি। কারচুপি রোধে প্রতিটি ব্যালটে ভোটারের ভোটার নম্বর ও সই নিয়ে রাখেন পোলিং কর্মকর্তা। ইভিএমে কারচুপির সুযোগ রয়েছে? এবারের নির্বাচনে দেশের ছয়টি আসনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে শুরু থেকেই বিরোধীদের অভিযোগ, এই ইভিএমের মাধ্যমে ডিজিটাল কারচুপির সুযোগ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে এম সাখাওয়াত হোসেন চৌধুরী জানান, ইভিএমে কারচুপির কোন সুযোগ আছে কিনা সেটা তিনি নিশ্চিত নন। কেননা এই প্রযুক্তির প্রোগ্রামিংয়ের সঙ্গে অনেক বড় একটি পক্ষ জড়িত থাকে। তবে এবারের ফলাফল থেকেই আসলে আন্দাজ করা য���বে যে, ইভিএমের ওপর পরবর্তীতে কতোটা নির্ভর করা যায়। মিস্টার হোসেন বলেন, "প্রত্যেকটি কেন্দ্রের ইভিএম মেশিনের আলাদা করে চিপ থাকে। সব চিপগুলোতে যখন প্রোগ্রামিং করা হয় বা প্রোগ্রামিংয়ের পর কপি করা হয়। তখন প্রোগ্রামটি স্বচ্ছ হতে পারে আবার করাপ্টেডও হতে পারে।" তবে কেন্দ্রীয়ভাবে এই প্রোগ্রাম করাপ্টেড করা অনেক কঠিন বলে তিনি মনে করেন। তার মতে, এবারের ইভিএম পরিচালনায় সেনাবাহিনীর পাশাপাশি কয়েকজন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা যুক্ত থাকায়, কারচুপির সুযোগ তেমনটা নেই। এবার দেশের ছয়টি আসনে ভোট গ্রহণ হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএমের মাধ্যমে। ইভিএম-এর যন্ত্রগুলো একটি অপরটির সঙ্গে যুক্ত নয়। অর্থাৎ এগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে সার্ভারের সাথে যুক্ত নয়। তাই এগুলোকে হ্যাক করারও কোন সুযোগ নেই। এছাড়া এর গণনাও আলাদাভাবে হয়। তাই বিএনপির অভিযোগ কতোটা যুক্তিযুক্ত সেটা নিয়ে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন। মিস্টার হোসেন বলেন, " এই অভিযোগটি যখন উঠেছিল তখন আমরা বলেছিলাম আপনারা আসেন, ব্লু টুথ দিয়ে করে দেখান। যদি আপনাদের আশঙ্কা সঠিক হয়, তাহলে আমরা ইভিএম রাখবোই না। কিন্তু তারা আসেও নাই, দেখেও নাই, দেখায়ও নাই, যে ব্লুটুথ দিয়ে আদৌ কারচুপি সম্ভব কিনা। তারা শুধু বলছে, কিন্তু তাদের কাছে কোন প্রমাণ নেই।" তাছাড়া এখনকার ইভিএমগুলো দুইভাবে ভেরিফিকেশন করে, প্রথমত ভোটারের পরিচয় নিশ্চিত করে, দ্বিতীয়ত ভোট গ্রহণ ও গণনা করে। এই পদ্ধতিতে ভোট কারচুপি প্রায় অসম্ভব বলে মনে করেন সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার। আসন্ন নির্বাচনের প্রচারণা পর্বকে একতরফা ও অসম বলে বিরোধী জোট যেমন অভিযোগ করে এসেছে, তেমনি ভোট গ্রহণের সময় কারচুপির আশঙ্কাও তারা প্রকাশ করেছে। +text: বাংলাদেশে ধর্ষণ কিংবা ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা মামলার বিচারের প্রশ্নে হাইকোর্ট সাত দফা নির্দেশনা জারি করেছে। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে এসব নির্দেশনা দেন। যার মধ্যে দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি, একটানা বিচারকাজ পরিচালনা, সাক্ষীর উপস্থিতি সেইসঙ্গে সাক্ষীর নিরাপত্তার বিষয়গুলো উঠে এসেছে। বাংলাদেশে একের পর এক ধর্ষণ এবং হত্যার পটভূমিতে উচ্চ আদালত থেকে আজ বৃহস্পতিবার যে সাতটি নির্দেশনা এসেছে: আরও পড়তে পারেন: 'মিন্ন���র পক্ষে দাঁড়াননি বরগুনার কোন আইনজীবী' ভারতে চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ছয়জন দোষী আদালত কক্ষে এক আসামির হাতে আরেক আসামি খুন ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ। এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য এই আদেশের কপি, ১/ সচিব, সুরক্ষা ও সেবা বিভাগ/জননিরাপত্তা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২/ সচিব, আইন ও বিচার বিভাগ, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং ৩/ রেজিস্টার জেনারেল, বাংলাদেশ সুপ্রিয় কোর্টের কাছে দ্রুত পাঠানো হবে। বাংলাদেশে ধর্ষণ কিংবা ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা মামলার বিচারের প্রশ্নে নিম্ন আদালতের বিচারক, পাবলিক প্রসিকিউটর পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের জন্য হাইকোর্ট একটি সাত দফা নির্দেশনা জারি করেছে। +text: সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে চালানো মশা নিধন কার্যক্রম আর এ জন্য ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হলে মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে ধীরগতি আনা যাবে না বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন ও কন্ট্রোল রুমের হিসাব বলছে, চলতি বছরে এ পর্যন্ত রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটে ডেঙ্গু সন্দেহে ২৪৮টি মৃত্যুর তথ্য পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে ১৭১টি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ১০৭টি মৃত্যু ডেঙ্গুজনিত বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। আরো পড়ুন: ডেঙ্গু জ্বর: ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সুযোগ কতটা আছে ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে এডিসের যে প্রজাতিটি 'ডেঙ্গু নিয়ে ঢাকার মতো পরিস্থিতি হবে না গ্রামে' পহেলা জানুয়ারি থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৯৫ হাজারের বেশি মানুষ। আর গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ২৫৭ জন। হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার বলেন, "ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা আপ এবং ডাউনের মধ্যে আছে। তবে পিক সিজনের তুলনায় এ সংখ্যা অনেক কমে এসেছে"। বাংলাদেশের একটি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের ভিড় এ বছর সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা ছিল গত ৭ই অগাস্ট। ওই দিন ২৪২৮ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার তথ্য ছিল। "এখন এই সংখ্যা দুশোতে নেমে এসেছে।" তবে শীতের সময় এডিস নয় বরং কিউলেক্স মশার সংখ্যা বেশি থাকে বলে এই মৌসুমে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি বাড়ার আশঙ্কা নেই বলেও জানান তিনি। ডা. আক্তার বলেন, "কিছুটা ঝুঁকি থাকলেও অতিরিক্ত ঝুঁকির কোন আশঙ্কা নেই"। তবে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, গত কয়েক দিনের বৃষ্টির পর মশার উপদ্রব বেড়েছে। রাজধানীর বনশ্রী এলাকার বাসিন্দা নিশাত রহমান। তিনি বলেন, গত কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি এবং একটু শীতশীত পড়ার পর থেকেই তার এলাকায় মশার উপদ্রব বেড়েছে। মিস রহমান বলেন, এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি থাকায় এখনো সে আতঙ্কেই রয়েছেন তিনি। "যেহেতু একটা বার মহামারি দেখে ফেলছি আমরা, তাই ভয়টা থেকে যাচ্ছে," তিনি বলেন। মিরপুর এলাকার বাসিন্দা ফারজানা খালিদ। তিনি বলছেন, মশা কিছুটা বেড়েছে তার এলাকায়। আর এজন্যই সম্প্রতি মশার কারণে রাতে মশারি টাঙিয়ে ঘুমান মিসেস খালিদ। তিনি বলেন, "তিন মাস ধরে ডেঙ্গুর ভয়ে ছিলাম। তারপর মনে হচ্ছিল যে মশার উপদ্রবটা কমে গেছে। কিন্তু গত তিন দিনের বৃষ্টির কারণে মশাটা মনে হচ্ছে আবার ভালোভাবে ফিরে আসছে।" "শীতে আশঙ্কা বেশি থাকবে" শীতপ্রধান দেশ না হওয়ার কারণে বাংলাদেশে সব সময়ই এডিশ মশা তৈরির উপযুক্ত আবহাওয়া থাকে বলে জানান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার। তিনি বলেন, নির্মাণাধীন ভবন, পানি সংকটের কারণে পানি ধরে রাখার প্রবণতাসহ নানা কারণে শীতের সময়ও মশা জন্মাবে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: আইএস নেতা আবু বকর আল-বাগদাদি নিহত: ট্রাম্পের ঘোষণা 'মার্ডার করিনি, চুরিও না - কাজ করে খেতে এসেছি' মহাসড়কজুড়ে হাজার হাজার ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ ঈগল যেভাবে বাড়িয়ে দিলো বিজ্ঞানীর ফোন বিল অন্য সময়ের তুলনায় কিছুটা কম পরিমাণে হলেও শীতেও জন্মায় এডিস মশা এখনও পর্যন্ত দুই শতাধিক রোগী আক্রান্ত হয়েছেন উল্লেখ করলে মিস্টার বাশার বলেন, এ সময় এই সংখ্যাটা বেশ উদ্বেগজনক। মিস্টার বাশার বলেন, "যেহেতু এবছর প্রকোপটা একটু বেশি ছিল তাই শীতেও একটু বেশি আশঙ্কা থাকবে"। "অন্যান্য বছর ডিসেম্বর-নভেম্বরে রোগীর সংখ্যা ১০০ হয়নি। আর এখন একদিনেই যদি দুই'শর বেশি রোগী হয় তাহলে তা উদ্বেগজনক। কারণ টোটাল এক মাসেও একশ রোগী হওয়ার কথা না," তিনি বলেন। আর তাই এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম কোনভাবেই ধীর করা যাবে না। যেভাবে কার্যক্রম চলছিল সেভাবেই অব্যাহত থাকতে হবে বলে জানান তিনি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জে���ারেল ডা. মোহাম্মদ শরীফ আহমেদ বলেন, যেহেতু ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কিছুটা কমেছে তাই এ বিষয়ে সচেতনতা কার্যক্রম কিছুটা ধীরগতি পেয়েছে। তবে মশা নিয়ন্ত্রণে সব ধরণের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। মিস্টার আহমেদ বলেন, "পিক সিজনে সচেতনতা কার্যক্রম আমরা শুরু করেছিলাম ব্যাপকভাবে, বহুমুখীভাবে। সেটা আমরা কিছুটা কমিয়ে আনছি।" "তবে প্রধান কাজ অর্থাৎ বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গু মশার প্রজনন স্থল চিহ্নিত ও ধ্বংস করার কাজ চলবে। কেমিক্যাল কন্ট্রোল যেটা সেটাও চলবে," বলেন তিনি। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অফ সিজনে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা কার্যক্রমের প্রয়োজন রয়েছে যাতে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে মশা জন্মাতে না পারে। চলতি বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি থাকায় মৌসুম শেষ হলেও আক্রান্তের সংখ্যা অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। +text: গোপন ক্যামেরায় নারীদের ছবি ধারণের প্রতিবাদে দক্ষিণ কোরিয়ায় বিক্ষোভ। এমনকি পুরুষদের সাথে সম্পর্কে জড়ানোর ক্ষেত্রেও সেখানকার নারীদের অনীহা রয়েছে। পৃথিবীতে সবচেয়ে কম জন্মহার যেসব দেশে তার মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া অন্যতম। বর্তমান অবস্থার কোন পরিবর্তন না হলে দেশটিতে জনসংখ্যা কমার দিকে যাবে। " আমি কখনোই সন্তান নেব না। আমার সে পরিকল্পনা নেই," বলছিলেন ২৪ বছর বয়সী জ্যাং ইয়ান-ওয়া। সন্তান নেবার জন্য যে শারীরিক ধকল সইতে হয় সেজন্য প্রস্তুত নন তিনি। সন্তান জন্ম দিলে পেশাগত ক্ষতি হতে পারে বলেও তিনি মনে করেন। আরো পড়ুন: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের 'যৌনদাসী' বিতর্ক কেন আবার সামনে 'স্পাইক্যাম ভিডিও' নিয়ে কেলেঙ্কারি দক্ষিণ কোরিয়ায় দক্ষিণ কোরিয়ার পর্ন সাইটের মালিক গ্রেফতার মাসিক বন্ধ হওয়া আর ধর্ষণই যেখানে নারীদের রুটিন ইয়ান-ওয়া একজন ওয়েব কমিক আর্টিস্ট। পেশাগতভাবে তিনি এখন যে অবস্থানে আছেন সেখানে আসতে তাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। তিনি চান না তাঁর এ কষ্টার্জিত পেশাগত অর্জন নষ্ট হয়ে যাক। "একটি পরিবারের অংশ হওয়ার চেয়ে আমি একা এবং স্বাধীন থাকতেই পছন্দ করি," বলেন ইয়ান-ওয়া। ইয়ান-ওয়া'র মতো দক্ষিণ কোরিয়ার অনেক নারী মনে করেন পেশাগত উৎকর্ষতা এবং পরিবার- দুটো একসাথে হয় না। একটি রাখতে হলে আরেকটি ছাড়তে হবে। এটি তাদের ধারণা। চাকরি অবস্থায় কোন নারী গর্ভবতী হলে সে যাতে বৈষম্যের শিকার না হয়, সেজন্য দক্���িণ কোরিয়ায় আইন রয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। চোই মুন-জেয়ং-এর গল্পটা সে রকম। তিনি যখন গর্ভবতী হবার বিষয়টি তাঁর অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানালেন, তখন খুব বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছিল। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আচরণে তিনি রীতিমতো বিস্মিত হন। "আমার বস বললেন, আপনার সন্তান হলে সেটিই হবে আপনার মনোযোগের জায়গা। তখন কর্মস্থলকে আপনি কম গুরুত্ব দেবেন। তখন আপনি কাজ করতে পারবেন?" বলছিলেন চোই মুন-জেয়ং। সে সময় তিনি একজন ট্যাক্স অ্যাকাউন্টেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাঁর উপর কাজের বোঝা চাপাতে থাকেন এবং অভিযোগ করেন যে কাজের প্রতি মুন-জেয়ং-এর কোন মনোযোগ নেই। মানসিক চাপ সইতে না পেরে একদিন অফিসেই অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। মুন-জেয়ং যাতে চাকরি ছেড়ে যেতে বাধ্য হয় সে পরিস্থিতি তৈরি করেন তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। " আমার আশপাশে অনেকেই আছেন যাদের কোন সন্তান নেই এবং সন্তান নেবার কোন পরিকল্পনাও তাদের নেই," বলছিলেন মুন-জেয়ং। দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনৈতিক অগ্রগতির পেছনে যেসব কারণ রয়েছে সেগুলো হচ্ছে - মানুষের কঠোর পরিশ্রম, দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করা, কাজের প্রতি একাগ্রতা। এসব কারণে দেশটি গত ৫০ বছরে উন্নয়নশীল দেশ থেকে পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে নারীদের অবদানের বিষয়টি উপেক্ষিত রয়ে গেছে। কিন্তু দেশটিতে ব্যাপক অর্থনৈতিক অগ্রগতি হলেও নারীর প্রতি সামাজিক মনোভাব বদলায়নি। ইয়ান-ওয়া বলেন, পুরুষদের মনোরঞ্জনের বিষয় হিসেবে দেখা হয় নারীদের। কোন মেয়ে চাকুরীজীবী হলেও সন্তান জন্মদানের পর তা লালন-পালনের ভার নারীর উপরেই বর্তায়। ইয়ান-ওয়া বলেন, শুধু বিয়ে নয়, তিনি ছেলে বন্ধুও চাননা। এর একটি কারণ হচ্ছে ছেলে বন্ধুর মাধ্যমে পর্নোগ্রাফির ভিকটিম হবার সম্ভাবনা থাকে। সম্পর্ক ভেঙ্গে যাবার পরে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনেক ছেলে তাদের মেয়ে সঙ্গীর অন্তরঙ্গ ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। দক্ষিণ কোরিয়ায় এখন এটি বড় একটি ইস্যু। তাছাড়া ছেলে বন্ধু কিংবা স্বামীদের দ্বারা শারীরিকভাবে নির্যাতনের আশংকাও রয়েছে। এতে থেকে বোঝা যাচ্ছে যে দক্ষিণ কোরিয়ায় কেন জন্মহার কম। দেশটিতে বিবাহের হার এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে আছে। প্রতি হাজারে ৫.৫ শতাংশ। ১৯৭০ সালে এ হার ছিল ৯.২ শতাংশ। বিয়ে কিংবা সন্তা��� নিতে অনাগ্রহের আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে জীবনযাত্রার ব্যয়। এসব নানা কারণে দক্ষিণ কোরিয়ার সমাজ ব্যবস্থায় একটি বড় ধরণের পরিবর্তন ঘটছে। এর ফলে দেশটিতে তৈরি হয়েছে 'সাম্পা প্রজন্ম' । 'সাম্পা' শব্দের অর্থ হচ্ছে তিনটি জিনিস বাদ দাও - সম্পর্ক, বিয়ে এবং সন্তান। বিয়ে না করা এবং সন্তান না নেবার প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার নারীরা ইদানীং বেশি ঝুঁকছেন। +text: করোনাভাইরাসের কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দরিদ্র মানুষ। এই প্রভাব সবচেয়ে মারাত্মক আকার ধারণ করবে বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশগুলোতে। গত সপ্তাহে বিশ্বব্যাংক তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে, করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৮% নেমে দুই কিংবা তিন শতাংশ হতে পারে। ঢাকায় একটি ক্যাটারিং সার্ভিসের ব্যবসা করেন আফরোজা খান। শহরের বিভিন্ন অফিসে প্রতিদিন দুপুরের খাবার বিক্রি করে এই প্রতিষ্ঠান। এছাড়া বিভিন্ন উৎসব এবং নানা পারিবারিক আয়োজনে চাহিদা অনুযায়ী খাবার সরবরাহ করে খান'স কিচেন। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার দেশজুড়ে যে 'লকডাউন' ঘোষণা করেছে সে কারণে গত একমাস যাবত সবকিছুই বন্ধ। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার আফরোজা খান বিবিসি বাংলাকে বলেন, এমন অবস্থায় তিনি চরম সঙ্কটে পড়েছেন। "আমার সব টাকা-পয়সা মার্কেটে। যাদের কাছে খাবার দিয়েছি তাদের কাছে টাকা আটকা পড়ে গেছে। এখান থেকে আমি কিভাবে সামলে উঠবো সেটা চিন্তা করতে পারছিনা," বলছিলেন আফরোজা খান। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবা খাত বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রতিটি খাত গত একমাসে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে মোটা দাগে- কৃষি, সেবা এবং শিল্প খাতে ভাগ করা হয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসেব অনুযায়ী, দেশের অর্থনীতিতে এখন সেবা খাতের অবদান প্রায় ৫০ শতাংশ। এছাড়া শিল্পখাত ৩৫ শতাংশ এবং কৃষির অবদান এখন ১৪ শতাংশের মতো। লকাউডনের কারণে বহু মানুষের উপার্জন বন্ধ হয়ে গেছে। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অর্থনীতিবিদ নাজনীন আহমেদ বলেন, গত একমাস অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকায় সেবা খাত ও শিল্পখাত মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। করোনাভাইরাস বিস্তারের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি কতটা ক্ষতির মুখে পড়বে তার একটি চিত্র দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক যে ধারণা দিচ্ছে সেটি রীতিমতো আঁতকে ওঠার মতো। বাংলাদেশ আশা করেছিল ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৮.২ শতাংশ। বিশ্ব ব্যাংক বলছে, এখন একই মেয়াদে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে দুই থেকে তিন শতাংশ। অবস্থা আরো খারাপ হবে ২০২১ সালে। ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক জাহিদ হোসেন বলেন, "মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত - অর্থবছরের এক-তৃতীয়াংশ করোনা আক্রান্ত।" মি: হোসেন বলেন, বাংলাদেশে ভোক্তা ব্যয়ের দুটো উৎসব আছে। এটি হচ্ছে রমজান মাস ও ঈদ এবং অন্যটি হচ্ছে পহেলা বৈশাখ। "পহেলা বৈশাখ আমরা কমপ্লিটলি মিস করে গেছি। রমজান এবং রমজানের ঈদও মিস করার একটা বড় সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে," বলছিলেন মি: হোসেন। উপার্জন নিয়ে দুশ্চিন্তা লকডাউনের কারণে গোলাপের চাহিদা নেই। ফলে মাঠে নষ্ট হয়ে যাওয়া ফুল ফেলে দিচ্ছেন কৃষক। করোনাভাইরাস: ঘুরে দাঁড়াতে পোশাক শিল্পকে এখনি যা করতে হবে করোনাভাইরাস: চীনের প্রতিবেশি ভিয়েতনামে কেন একজনও মারা যায়নি কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? করোনাভাইরাসের উৎপত্তি কোথায়, কেন এতো প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে অর্থনীতি সংকটে পড়ায় মানুষ তাদের চাকরি এবং ব্যবসা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে। ঢাকার কাছে মুন্সিগঞ্জের একটি গ্রামে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন মিনারা বেগম। হাঁস, মুরগি, গরু-ছাগল পালন করেই তার সংসার চলে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে যাওয়া ঠেকাতে সরকার যেভাবে সবকিছু বন্ধ রেখেছে তাতে মিনারা বেগমের চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন। তিনি বলেন, "কোন কিছুই বিক্রি করতে পারতেছি না। এইভাবে চললে না খায়া মারা যামু।" বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক জাহিদ হোসেন বলছেন, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় খরচ করার ক্ষেত্রে এখন মানুষ বেশ সাবধান। অতিপ্রয়োজনীয় জিনিষ ছাড়া এখন মানুষ অন্য কিছু কিনতে চাইবে না। মি: হোসেন বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি বড় শক্তি হচ্ছে ভোক্তা ব্যয়। অর্থাৎ বিভিন্ন খাতে মানুষ যে টাকা খরচ করে সেটার উপর নির্ভর করে শিল্প প্রতিষ্ঠানও টিকে আছে। এ জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জিডিপি প্রবৃদ্ধির উপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে বলে উল্লেখ করেন মি: হোসেন। অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হওয়ায় অনেকে টাকা করতে চাইবে না। "ভোক্তা ব্যয় আমাদের জিডিপির ৬৯%। এই ব্যয় যদি করা সম্ভব না হয়, এই ব্যয়ের উপর নির্ভরশীল যারা আছেন, ছোট উৎপাদক থেকে শুরু করে শিল্পখাতে এবং সেবা খাতে সবাই বিক্রির সংকটে পড়বে।" "একটা হোটেল রেস্তোরাঁয় গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করা, রিক্সায় চড়ে ঘুরে বেড়ানো, কাপড়-চোপড় কেনা, প্রসাধনী কেনা, কক্সবাজারে গিয়ে ছুটি কাটানো - এই বিভিন্ন ধরণের ব্যয় যে মানুষ করে, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া মানুষ কিন্তু এখন আর ব্যয় করতে সাহস পাচ্ছে না," বলছিলেন মি: হোসেন। ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পের বেহাল দশা বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশে প্রায় ৮০ লক্ষ শিল্প উদ্যোগ আছে। এর মধ্যে ৯৮ শতাংশই হচ্ছে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্প। বাকি দুই শতাংশ শিল্প হচ্ছে গার্মেন্টস এবং ফার্মাসিউটিক্যালস খাতে। তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ বলছে, করোনাভাইরাস বিস্তারের সময় থেকে শুরু হবে এ পর্যন্ত, অর্থাৎ গত দুইমাসে তাদের তিনশ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল হয়েছে। করোনা সংক্রমণের কারণে দিশা হারিয়েছে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র শিল্প অর্থনীতিবিদ নাজনীন আহমেদ বলেন , ক্ষুদ্র, মাঝারি এবং বড় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হাবার কারণে জিডিপির উপর নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করবে। "আমার জিডিপি যদি ৩২০ বিলিয়ন ডলারের হয় এবং সেখানে যদি শিল্পের অবদান হয় ৩৫ শতাংশ, এবং সেটার ৯৫ শতাংশই এখন বন্ধ, এই তিনমাসে যা উৎপাদন হতে পারতো সেটা আর হচ্ছে না," বলছিলেন নাজনীন আহমেদ। পোশাক রপ্তানি এবং রেমিটেন্স নিয়ে অনিশ্চয়তা যেসব দেশে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি পোশাক রপ্তানি করে সেসব দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার হয়েছে সবচেয়ে বেশি। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, রেমিটেন্স। বিশ্বব্যাংক বলছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে রেমিটেন্স ২২ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এর কারণ হচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলোতে অনেকে চাকরি হারাবে এবং মজুরিও কমে যাবে। বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের জন্য হুমকি তৈরি করেছে করোনাভাইরাস বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেব অনুযায়ী গার্মেন্টস রপ্তানি এবং রেমিটেন্স - এ দুটো মিলিয়ে বাংলাদেশের জিডিপিতে অবদান প্রায় ১৮ শতাংশ। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ���ায়ালগের অর্থনীতিবিদ খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, পশ্চিমা অর্থনীতির সাথে বাংলাদেশের ভাগ্যও জড়িয়ে আছে। "আমাদের রপ্তানি বাণিজ্য এবং রেমিটেন্স - এ দুটো জায়গায় আমরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। মূল আমদানিকারক দেশগুলোও করোনা আক্রান্ত এবং সেখানে কর্মসংস্থানে অনেক চ্যালেঞ্জ।সুতরাং এই দেশগুলো খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের চাহিদা ফিরে আসতে সময় লাগবে। " তিনি আশংকা করছেন, যেসব দেশে এখন অনেক বাংলাদেশি কাজ করছেন তাদের অনেকেই করোনা পরবর্তীকালে ফিরে আসতে বাধ্য হবে। কারণ সেখানে শ্রমিক ছাঁটাই হবে। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য বাংলাদেশ সরকার এরই মধ্যে প্রায় ৯২,০০০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এসব প্রণোদনা তখনই কাজে লাগবে যখন বাজার ব্যবস্থা স্বাভাবিকভাবে চলবে। এসব প্রণোদনার সুযোগ কাজে লাগিয়ে কিছু ব্যবসায়ী হয়তো ব্যাংক থেকে টাকা বের করে নিয়ে যাবেন - এমন আশংকাও করছেন অর্থনীতিবিদরা। করোনাভাইরাস ব্যাপক বিস্তারের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি এখন বড় ধরণের বিপর্যয়ের সামনে দাঁড়িয়ে আছে বলে বিভিন্ন সংস্থা সতর্ক করে দিচ্ছে। +text: ছেলেকে ২০ বছর খাঁচায় আটকে রাখার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে জাপানের পুলিশ জাপানের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকের কর্মকর্তাদের কাছে ইয়োশিতানে ইয়ামাসাকি বলেছেন, তাঁর ছেলেকে তিনি আটকে রাখেন কারণ মানসিক সমস্যা দেখা দেয়ার কারণে তাঁর ছেলে মাঝেমধ্যে হিংস্র আচরণ করতো। এখন তার ছেলের বয়স ৪২। মি. ইয়ামাসাকি যেই খাঁচায় তার ছেলেকে আটকে রাখেন সেটি উচ্চতায় ১মিটার ও চওড়ায় ২ মিটারের কম। খাঁচাটি সান্ডা শহরে মি.ইয়ামাসাকির বাসার পাশে রাখা থাকতো। তার ছেলে বর্তমানে শহরের কর্তৃপক্ষের কাছে আছে। দীর্ঘদিন খাঁচায় বন্দী থাকার কারণে তিনি পিঠের সমস্যায় ভুগছেন। স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী জানুয়ারি থেকে পশ্চিম জাপানের সমাজ কল্যাণ বিভাগের তদারকিতে রয়েছেন তিনি। সান্ডা শহর কর্তৃপক্ষের একজন কর্মকর্তা মি. ইয়ামাসাকির বাসায় দেখা করতে গেলে কর্তৃপক্ষ ৪২ বছর বয়সী ঐ ব্যক্তির বন্দি থাকার ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারে। তদন্তকারীরা মনে করছে মি. ইয়ামাসাকি তার মানসিকভাবে অসুস্থ ছেলেকে ১৬ বছর বয়স থেকেই বন্দী করে রাখা শুরু করে। ঐ সময় থেকে তার মধ্যে মানসিক অসুস্থত���র লক্ষণ প্রকাশ হওয়া শুরু করে। আপাতত ছেলেকে ১৮ই জানুয়ারি ৩৬ ঘন্টা আটকে রাখার দায়ে অবসর ভাতায় জীবনযাপন করা মি. ইয়ামাসাকিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী মি. ইয়ামাসাকি তার নামে আনা অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তিনি কর্তৃপক্ষকে বলেছেন যে তার ছেলেকে তিনি প্রতিদিন খাবার দিয়েছেন ও গোসল করার সুযোগও দিয়েছেন। আরো পড়তে পারেন: সুপারস্টার সালমান খানের বেলায় ভিন্ন বিচার? সৌদি যুবরাজের হলিউড সফর কেমন হলো সিরিয়া থেকে কেন সৈন্য ফেরাতে পারছে না যুক্তরাষ্ট্র? কাঠের খাঁচায় নিজের ছেলেকে আটকে রাখার অভিযোগে ৭৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে আটক করেছে জাপানের পুলিশ। +text: অ্যামাজোনাস রাজ্যে আনাভিলহানাস দ্বীপপুঞ্জের কাছে রিও নেগ্রো নদীর তীর, ২০১৯ "আমার কাছে এটা শেষ সীমান্তের মতো, এ যেন নিজেই রহস্যময় এক জগৎ, সেখানে প্রকৃতির এমন এক তীব্র শক্তি অনুভব করা যায় যেটা এই পৃথিবীর আর কোথাও নেই," বলেন তিনি। কটিঙ্গো জলপ্রপাত, রোরাইমা রাজ্যে, ২০১৮ "এটা এমন এক অরণ্য যার কোনো শেষ নেই, অন্তহীন। সারা পৃথিবীতে যতো গাছপালা ও পশুপাখি আছে তার এক দশমাংশ আছে প্রকৃতির এই একটি মাত্র গবেষণাগারেই।" মারাওইয়া পর্বতমালা, অ্যামাজোনাস রাজ্যে, ২০১৮ অ্যামাজনের আদিবাসী লোকজনের আজীবনের বন্ধু সালগাদো অরণ্যের সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বহু গোত্রের সদস্যদের দৈনন্দিন জীবনের ছবি তুলেছেন। এসব ছবিতে দেখা যাচ্ছে তারা কীভাবে শিকার করছেন, মাছ ধরছেন, নাচ গান করছেন এবং পালন করছেন বহু সামাজিক ও ধর্মীয় রীতি নীতি। এই মেয়েটির মুখে যে নকশা আঁকা হয়েছে সেটা বলে দেয় যে তার এখনও বিয়ে হয়নি। আক্রি রাজ্যের রিও এমোনিয়া আদিবাসী এলাকার কাম্পাতে এই ছবিটি তোলা হয়েছে ২০১৬ সালে। ফটোগ্রাফার সেবাস্তিয়াও সালগাদোর জন্ম ১৯৪৪ সালে। অর্থনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত পেশা ছেড়ে ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন ১৯৭৩ সালে। বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র সংস্থার হয়ে বহু অ্যাসাইমেন্টে কাজ করেছেন তিনি। এর পর তিনি ১৯৯৪ সালে তার স্ত্রী লেলিয়ার সঙ্গে মিলে প্রতিষ্ঠা করেন অ্যামাজনস ইমেজেস নামের একটি সংস্থা। এক ব্যক্তি পালকের অলঙ্কার তৈরি করছেন, ছবিটি আক্রি রাজ্যের রিও গ্রেগেরিও আদিবাসী এলাকায় ২০১৬ সালে তোলা। কয়েক বছর ধরে তার তোলা ছবি বহু প্রদর্শনী এবং বই-এ স্থান পেয়েছে। স্য���রা দো ডিভাইজর ন্যাশনাল পার্কে বৃষ্টি পড়ছে। ২০১৬ সালে তোলা "আমি মনে প্রাণে চাই, আমার যেটুকু শক্তি আছে, যেটুকু ভালবাসা আছে তা থেকে আমি চাই, আমার এই বই যেন ৫০ বছর পরে হারিয়ে যাওয়া এক পৃথিবীর নিদর্শনের দলিল না হয়ে ওঠে," বলেন তিনি। "অ্যামাজনকে বেঁচে থাকতে হবে।" এক তরুণী আয়না দেখে নিজের মুখে রঙ করছেন। রিও এমোনিয়া আদিবাসী এলাকায় ২০১৬ সালে তোলা। অ্যামাজোনিয়া, তুলেছেন সেবাস্তিয়াও সালগাদো, প্রকাশ করেছে টাসচেন ব্রাজিলের একজন ফটোগ্রাফার সেবাস্তিয়াও সালগাদো ছয় বছর ধরে অ্যামাজন অঞ্চলে ঘোরাঘুরি করে অরণ্য, নদী নালা এবং পাহাড় পর্বতের ছবি তুলেছেন। এই ছবিগুলো তিনি তুলেছেন তার নতুন বই অ্যামাজোনিয়ার জন্য। +text: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মিস ব্যানার্জি আরও বলেছেন, এই ধরনের কথিত 'পুশব্যাকে'র প্রশ্নে তার সরকার সিদ্ধান্ত নেবে মানবিকতার ভিত্তিতেই। রাজ্যের অ্যাক্টিভিস্ট ও মানবাধিকার কর্মীরা অবশ্য বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা - কারণ তাঁর সরকারের সক্রিয় সমর্থন ছাড়া সন্দেভাজন বাংলাদেশীদের সীমান্তের অন্য পারে ঠেলে দেওয়া কিছুতেই সম্ভব নয়। বস্তুত ভারতের নানা প্রান্ত থেকে অবৈধ বাংলাদেশী সন্দেহে আটক নারী-পুরুষদের দলে দলে কলকাতায় নিয়ে এসে গোপনে ও জোর করে সীমান্ত পার করিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে মানবাধিকার সংগঠনগুলো অভিযোগ করে আসছে মাসদুয়েক আগে থেকেই। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ব্যাঙ্গালোর থেকে ৫৯ জনের এমনই একটি দলকে পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে আসা হয়, কিন্তু দিনতিনেক বাদেই তারা সবাই রাতারাতি উধাও হয়ে যান। ব্যাঙ্গালোর থেকে গত নভেম্বরে কলকাতায় নিয়ে আসা হয় এই কথিত বাংলাদেশীদের গত সপ্তাহান্তে বিবিসি উর্দুকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, তার সরকার এ ব্যাপারে কিছুই জানত না। মমতা ব্যানার্জি ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, "এখানে যখন ওদের পাঠিয়েছিল আমাদের বলে-কয়ে কিছু পাঠায়নি। ওরা এখানে আসার পর আমরা দেখলাম।" "তখন ওদের খাবারদাবারও কিছু জোটেনি। এরপর দুদিনের জন্য আমরা ওদের এখানে থাকা-খাওয়ার সব বন্দোবস্ত করেছিলাম। কিন্তু তারপর ওদের কী হল, সে ব্যাপারে আমাদের কাছে আর কোনও খবর নেই।" কিন্তু তাহলে ভারতে কেন্দ্রীয় সরকার যখন এভাবে কথিত বাংলাদেশীদের সীমান্তের অন্য পারে ঠেলে দিতে চায়, সেখানে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের কি কোনও ভূমিকা-ই থাকে না? সম্প্রতি ভারতের নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ সভায় মমতা ব্যানার্জি এ প্রশ্নের জবাবে মমতা ব্যানার্জি বলেন, "এখানে আমার কী করা উচিত, কী করব সেটা এখনই আমি বলতে চাই না। এটা আসলে পরিস্থতির ওপর নির্ভর করে।" "আগামীতে কেমন পরিস্থিতি আসে, লোকজন বিষয়টা নিয়ে কী ভাবছে, কী ঘটছে, কোনটা সঠিক বা কোনটা বেঠিক হচ্ছে, কীসে মানবিকতা আছে, কীসে ন্যায় আছে সেটাও আমাদের দেখতে হয়।" "তবে এটাও বলব, আমাদের ভারত এক বিরাট দেশ - আর এখানে নাগরিকত্ব একটা নিরন্তর প্রক্রিয়া।" "সেখানে অমুককে বের করে দাও, তমুককে বের করে দাও, এ সব যা ইচ্ছে তাই বলব - এগুলো একেবারেই ঠিক নয়। মানুষের মৌলিক অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা কারওরই নেই!" পুশব্যাকের গোটা প্রক্রিয়া থেকে মমতা ব্যানার্জি এভাবে নিজেকে দূরে রাখতে চাইলেও পশ্চিমবঙ্গের মানবাধিকার সংস্থা মাসুমের কর্ণধার কিরীটি রায় কিন্তু বলছেন, যেভাবে গোটা ব্যাপারটায় রাজ্য সরকার জড়িত ছিল তাতে বোঝা যায় মুখ্যমন্ত্রী মোটেই সত্যি বলছেন না। পুশব্যাকের বিরুদ্ধে হাওড়া রেল স্টেশনে মানবাধিকার কর্মীদের বিক্ষোভ তার কথায়, "এই রাজ্যেই তো ওই বাংলাদেশীদের এতদিন ধরে রাখা হল। সরকারের বিডিও (স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা) তাদের থাকতে দিলেন, পঞ্চায়েত ব্যবস্থা করল, বড় বড় পুলিশ কর্মকর্তারা তদারকি করলেন - আর এখন বলা হচ্ছে কিছুই জানতাম না?" "এমন কী বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের হাতে ওই মানুষগুলোকে তুলেও দেওয়া হয়েছে। তিন দিন পর তাদের গোপনে বর্ডারও পার করিয়ে দেওয়া হয়েছে।" "আপনারাই বলুন, রাজ্য সরকারের প্রত্যক্ষ সমর্থন ছাড়া এগুলো কীভাবে সম্ভব?", পাল্টা প্রশ্ন করেন তিনি। ব্যাঙ্গালোর থেকে নিয়ে আসা কথিত বাংলাদেশীদের জোর করে ফেরত পাঠানোর বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে হাওড়া রেলস্টেশনে গিয়েছিলেন অ্যাক্টিভিস্ট নিশা বিশ্বাস। তিনিও বিবিসিকে বলেছেন, "মুখ্যমন্ত্রীর এভাবে দায় এড়ানোর চেষ্টা খুবই হাস্যকর। কথিত বাংলাদেশীরা তো এখানে রাজ্য সরকারের হেফাজতেই ছিল।" "সেই এতগুলো লোক কি হাওয়ায় মিলিয়ে গেল? ভোররাতে সরকার বাস পাঠিয়ে এতগুলো লোককে তুলে নিয়ে গেল, আর মুখ্যমন্ত্রী বলছেন আমি কিছুই জানতাম না? এটা কি হয় না কি?" এই ট্রেনে চাপিয়েই ব্যাঙ্গ���লোর থেকে পশ্চিমবঙ্গে আনা হয় কথিত বাংলাদেশীদের দলটিকে "আমরা আরও শুনেছি এই রাজ্যের উত্তরপ্রান্তের সীমান্ত দিয়েই তাদের ঠেলে দেওয়া হয়েছে। কাজেই মুখ্যমন্ত্রী যে কথা বলছেন, তা কিছুতেই সম্ভব নয়।" এমন কী, পশ্চিমবঙ্গ সরকার কথিত বাংলাদেশীদের ব্যাপারে 'মানবিক অবস্থান' নিয়ে থাকে - মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবিও নস্যাৎ করে দিচ্ছেন কিরীটি রায়। "প্রতি মাসে আমরা কম করে এমন অন্তত দুটো ঘটনা পাই যেখানে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরোনোর জন্য বাংলাদেশী নারী-শিশুদের বিরুদ্ধেও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ক্রিমিনাল কেস দিয়ে থাকে", জানাচ্ছেন কিরীটি রায়। তিনি আরও বলছিলেন, "রাজ্য সরকারের পুলিশই সেই মামলাগুলো দেয়, আদালতে দাঁড়িয়ে সরকারি কৌঁসুলি সেই মানুষগুলোর বিরুদ্ধে সওয়াল করে যান - এ জিনিস তো চলছেই!" ফলে রাজ্য সরকারের সম্পূর্ণ অগোচরেই পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত দিয়ে কথিত বাংলাদেশীদের ঠেলে দেওয়া হচ্ছে - স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী এই দাবি করলেও অনেকেই তার কথা বিশ্বাস করতে পারছেন না। ভারত থেকে সম্প্রতি শত শত কথিত বাংলাদেশীকে পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে সীমান্ত পার করিয়ে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি দাবি করেছেন তিনি সে ব্যাপারে বিন্দুবিসর্গও জানতেন না। +text: প্রধানমন্ত্রী মোদী ও প্রধানমন্ত্রী হাসিনা।। দিল্লিতে, ২০১৭ ওই নির্বাচনকে সফল করার লক্ষ্যে ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব নির্বাচনের ঠিক আগে ঢাকা সফর পর্যন্ত করেছিলেন। কিন্তু পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, পাঁচ বছর বাদে বাংলাদেশে পরবর্তী নির্বাচনকে ঘিরে ভারত কিন্তু এবার অনেকটাই নিস্পৃহ - এই নির্বাচনের প্রাক্কালে ভারতের দিক থেকে তেমন কোনও সক্রিয়তাই চোখে পড়ছে না। কিন্তু কেন ভারত এধরনের অবস্থান নিচ্ছে, বাংলাদেশে এবারের ভোটাকেই বা তারা কী চোখে দেখছে? আসলে বাংলাদেশে ২০১৪র নির্বাচনের সময় ভারতের দিক থেকে যে ধরনের অতি-সক্রিয়তা ছিল, পাঁচ বছর বাদে এবারে তার কিন্তু ছিটেফোঁটাও নেই। বাংলাদেশ সফরে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং। ডিসেম্বর, ২০১৩ আমাদের পেজে আরও পড়ুন: হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেন ফটোগ্রাফার শহিদুল আলম রোহিঙ্গা সংকট: প্রত্যাবাসনের জন্য জড়ো করা শরণার্থীরা 'যাবো না' বলে স্লোগান দিচ্ছে মমতা ব্যানার্জির ক্ষোভ: পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন আটকে আছে এ বছরেই নির্বাচন হয়েছে নেপাল বা মালদ্বীপেও, সেখানেও ভারতের দৃশ্যমান কোনও ভূমিকা চোখে পড়েনি। দিল্লিতে ইনস্টিটিউট ফর ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালিসিসের সিনিয়র ফেলো স্ম্রুতি পট্টনায়ক মনে করছেন, খুব সচেতনভাবেই ভারত এবার বাংলাদেশের নির্বাচন থেকে একটা দূরত্ব বজায় রাখতে চাইছে। ড: পট্টনায়কের কথায়, "২০১৪-তে ভারত যেভাবে পররাষ্ট্রসচিবকে ঢাকায় পাঠিয়েছিল সেই অভিজ্ঞতা কিন্তু খুব সুখকর হয়নি। সেটাকে অনেকেই ভারতের হস্তক্ষপ হিসেবে দেখেছিলেন - যদিও ভারতের আসল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশে একটা সাংবিধানিক বিপর্যয় এড়ানো।" "কিন্তু এখন বাংলাদেশের রাজনীতি যে ধরনের পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তাতে ভারতের উদাসীন থাকাটাই উচিত, আর তারাও ঠিক সেটাই করছে। ভুললে চলবে না, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কও এর মাঝে অনেক পরিণত ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে।" বাংলাদেশে বিগত নির্বাচনে বিএনপি জোট অংশ নিতে রাজি হয়নি বলেই সেই নির্বাচনকে ঘিরে অত প্রশ্ন উঠেছিল। ২০১৪র সেই বিতর্কিত নির্বাচনে ভোটের প্রচার কিন্তু এবারে নির্বাচন অনেকটাই অংশগ্রহণমূলক হতে যাচ্ছে - ফলে ভারতেরও অত মাথা ঘামানোর কোনও প্রয়োজন নেই, বিবিসিকে বলছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিনাকরঞ্জন চক্রবর্তী। তার কথায়, "বড় পরিবর্তন বাংলাদেশে যেটা দেখতে পাচ্ছি তা হল ভারতে যেটাকে আমরা 'মহাগঠবন্ধন' বলি, সেই ধাঁচে ওখানেও বিরোধীদের ঐক্যফ্রন্ট আত্মপ্রকাশ করেছে।" "এখন তো আবার যুক্তফ্রন্টও চলে এসেছে। ফলে নির্বাচন সঠিক পথেই আছে মনে হচ্ছে - আর এভাবে যদি সব এগোয় তাহলে তো ২০১৪র তুলনায় সেটা সম্পূর্ণ আলাদা!" "গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াটা তো এখন স্বাভাবিক পথেই আছে মনে হচ্ছে। সব দলও নির্বাচনে যোগ দিতে চাইছে, যেমনটা স্বাভাবিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় হয় আর কী। কাজেই মনে তো হয় না এই নির্বাচনকে সমালোচনা করার কোনও সুযোগ আছে বলে!" বাংলাদেশে ভারতের আর এক প্রাক্তন হাই কমিশনার ভিনা সিক্রিও মনে করেন, "যদিও এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় - তারপরও বিএনপির নির্বাচনে যোগদান খুবই ইতিবাচক ব্যাপার।" ঢাকায় ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত ভিনা সিক্রি "তারা যেভাবে জোট শরিকদের সঙ্গে কথা বলছে, আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা করছে - যেমনটা স্বাভাবিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় হয়ে থাকে - সেটা অবশ্যই দারুণ বিষয়।" "ভারত এখানে কী করল, বা কী করল না ম্যাগনিফাইং গ্লাস দিয়ে তা খোঁজার কোনও দরকারই নেই", পরিষ্কার মত তার। বাংলাদেশে এবারের নির্বাচনী পরিবেশে এখনও পর্যন্ত ভারত-বিরোধিতার কোনও আবহ তেমন নেই, দিল্লির দৃষ্টিতে সেটাও অত্যন্ত ইতিবাচক একটা পদক্ষেপ। ফলে আগ বাড়িয়ে সে দেশের নির্বাচন নিয়ে অতি-সক্রিয়তা দেখিয়ে ওই পরিবেশ বিগড়ে দেওয়াও কোনও বুদ্ধিমানের কাজ নয়, এটাও হয়তো ভারত মাথায় রাখছে। পিনাকরঞ্জন চক্রবর্তীর কথায়, "আমি তো বলব এটা পারস্পরিক সম্পর্কের একটা ম্যাচিওিরিটি, যেখানে অন্য দেশকে নিজের নির্বাচনে ডোমেস্টিক ইস্যু বানানোর কোনও দরকার পড়ে না।" এবারের নির্বাচনের আগে ঢাকায় বিএনপির সদর দফতরের সামনের একটি দৃশ্য। ১৪ নভেম্বর, ২০১৮ "হ্যাঁ, দুদেশের মধ্যেকার অভাব-অভিযোগ বা অমীমাংসিত ইস্যুগুলো নিয়ে অবশ্যই দুদেশের সরকারকেই ডিল করতে হবে। সেটা কিছুটা হয়নি, কিছুটা আবার হয়েছেও।" "যেমন স্থল সীমান্ত চুক্তি হয়েছে, সমুদ্র-সীমা চুক্তি হয়েছে। প্রচুর বিনিয়োগ হয়েছে, আধুনিকীকরণের কাজও হচ্ছে। তো এগুলো তো একটা সুফল দেবেই!", বলছিলেন তিনি। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এই পরিণতি আর ভোটে বিএনপি-র যোগদান, এই দুটো ফ্যাক্টরই আসলে পাঁচ বছর আগের তুলনায় ভারতের অবস্থানকে আজ পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। পররাষ্ট্রসচিবকে পাঠানো তো দূরস্থান, বাংলাদেশের এবারের নির্বাচন নিয়ে তাই এখনও কোনও বিবৃতি দেওয়ারও প্রয়োজন বোধ করেনি ভারত। বাংলাদেশে ২০১৪-র ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনকে যে দেশটি আগাগোড়া জোরালো সমর্থন জানিয়ে এসেছিল, সেটি ছিল ভারত। +text: বোমা বিস্ফোরণে আহত র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মারা গেছেন র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখার প্রধান কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান জানিয়েছেন, ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে রাত ১২.০৫ মিনিটে তিনি মারা যান। সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনার পর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। গত শনিবার সিলেটে জঙ্গি বিরোধী অভিযান চলার সময় বোমা বিস্ফোরণে তিনি গুরুতর আহত হন। আতিয়া মহলের কাছেই সেই বিস্ফোরণে দু'জন পুলিশ সদস্যসহ ছয়জন নিহত হয়েছিলেন। আহত হয়েছিলেন আরো অন্তত ত্রিশ জন। সিলেটে বোমা বিস্ফোরণে আহত হবার পর গুরুতর আহত অবস্থায় মি. আজাদকে প্রথমে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সিলেটে আতিয়া মহলে সেনাবাহিনীর জঙ্গি বিরোধী অভিযানের সময়, কাছেই বোমা বিস্ফোরণে দু'জন পুলিশ সদস্যসহ ছয়জন নিহত হয়েছিলেন। তখন গুরুতর আহত লেফটেন্যান্ট কর্নেল আজাদ কিন্তু সেখানকার ডাক্তারদের পরামর্শে তাকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আনা হয়। কিন্তু পরিস্থিতির কোন উন্নতি না হওয়ায় গোয়েন্দা প্রধানকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু বুধবার তাকে সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখা থেকে জানানো হয়েছে, সিঙ্গাপুরের 'ডাক্তারদের পরামর্শে' তাকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়। ২০১১ সালে উপ-পরিচালক হিসাবে সেনাবাহিনী থেকে র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখায় যোগ দিয়েছিলেন তৎকালীন মেজর আজাদ। লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদোন্নতির পর তিনি গোয়েন্দা শাখার পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সম্প্রতি তাঁর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি) বদলি হয়। ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের পর তাঁর বিজিবিতে যোগ দেয়ার কথা ছিল। আরো পড়ুন: আহত র‍্যাবের গোয়েন্দা প্রধানকে দেশে আনা হয়েছে হামলা নয়, বোমাটি আগে থেকেই ছিল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানকে পতাকা দেখাতে গিয়ে বিপাকে ভারত সিলেটে জঙ্গি বিরোধী অভিযানের সময় বোমা বিস্ফোরণে আহত র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মারা গেছেন। +text: সুইৎজারল্যান্ডে নিকাব-বিরোধী প্রচারাভিযানে "উগ্র ইসলাম প্রতিহত করার" শ্লোগান দেয়া হয় গণভোটের সরকারি ফলাফলে দেখা যায়, সামান্য ব্যবধানে এই নিষেধাজ্ঞা অনুমোদিত হয়। নিষেধাজ্ঞার পক্ষে ৫১.২% এবং বিপক্ষে ৪৮.৮% ভোট পড়েছে। দক্ষিণপন্থী সুইস পিপলস পার্টি এই গণভোটের প্রস্তাব করেছিল এবং তাদের প্রচারাভিযানে নিকাব-পরা মুসলিম নারীর ছবি দিয়ে "উগ্র ইসলাম প্রতিহত করার" শ্লোগান দেয়া হয়েছিল। ইউরোপের অনেক দেশেই মুখ-ঢাকা ইসলামিক পোশাক একটি বিতর্কিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ফ্রান্সে ২০১১ সালে প্রকাশ্যে পুরো-মুখঢাকা নিকাব নিষিদ্ধ করা হয়। নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, অস্ট্রিয়া ও বুলগেরিয়াও প্রকাশ্যস্থানে মুখ-ঢাকা পোশাক পরার ওপর পূর্ণ বা আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। জার্মানির ব্যাভারিয়া রাজ্যেও এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা আছে। সুইৎজারল্যান্ডের এই নিষেধাজ্ঞা অবশ্য করোনাভাইরাসের জন্য ফেসমাস্ক পরার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। 'অন্ধকার দিন' দেশটির একটি প্রধান ইসলামিক গোষ্ঠী বলেছে, বোরকা-নিকাব নিষিদ্ধের এ দিনটি "মুসলিমদের জন্য একটি অন্ধকার দিন।" "আজকের এই সিদ্ধান্ত পুরো ক্ষতকে আবার উন্মুক্ত করেছে, আইনী অসাম্যকে আরো সম্প্রসারিত করেছে, এবং মুসলিম সংখ্যালঘুদের একঘরে করে রাখার স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে" - একথা বলা হয় সেন্ট্রাল কাউন্সিল অব মুসলিমসের এক বিবৃতিতে। এতে আরো যোগ করা হয় যে তারা এ সিদ্ধান্ত আদালতে চ্যালেঞ্জ করবে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: এবার বুরকা ও নিকাব নিষিদ্ধ হচ্ছে অস্ট্রিয়ায় ব্রিটেনে বোরকা নিষিদ্ধ করার অঙ্গীকার ইউকিপের পরীক্ষার হলে নিকাব-বোরকা নিষিদ্ধ শ্রীলঙ্কায় ফ্রান্সে যে মুসলিম বিদ্বেষের জেরে স্কুলে হিজাব নিষিদ্ধ হয়েছিল মুসলিমদের বোরকা বা নিকাব ইউরোপের অনেক দেশেই বিতর্কের বিষয় হয়ে উঠেছে সুইৎজারল্যান্ডের এ নিষেধাজ্ঞার কিছু সমর্থক এব্যাপারে বলেছিলেন, এটা নারীর সমানাধিকারের জন্য উপকারী হবে । কিন্তু সরকার বলেছিল, একজন নারী কি পোশাক পরবে তা ঠিক করা রাষ্ট্রের কাজ নয়। নিকাব পরেন মাত্র ৩০ জন জার্মানির লুসার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বলা হয়, সুইৎজারল্যান্ডে প্রায় কেউই বোরকা পরেন না, এবং দেশটির প্রায় ৪ লক্ষ মুসলিমের মধ্যে মাত্র ৩০ জনের মত নারী নিকাব পরে থাকেন। সুইৎজারল্যান্ডে ৮৬ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় ৫ শতাংশ মুসলিম এবং তাদের বেশিরভাগই তুরস্ক, বসনিয়া ও কসোভো থেকে আসা। সুইস গণভোটে এর আগেও ইসলাম একটি ইস্যু হয়ে উঠেছিল। ২০০৯ সালে এক গণভোটে সেদেশের জনগণ সরকারি পরামর্শের বিরুদ্ধে গিয়ে মসজিদের মিনার নির্মাণ নিষিদ্ধ করার পক্ষে ভোট দেন। এই প্রস্তাবটিও তুলেছিল এসভিপি। তাদের যুক্তি ছিল, মসজিদের মিনার ইসলামিকরণের একটি চিহ্ন। বিভিন্নমুখী প্রতিক্রিয়া সুইৎজারল্যান্ডের মুসলিম সম্প্রদায়ের একজন সদস্য সানিচা আমেতি বিবিসিকে বলেন, এই গণভোটের প্রচারে যেভাবে মুসলিম নারীদের তুলে ধরা হয় - তা তাকে বিচলিত করেছে। তিনি বলেন, "সুইৎজারল্যান্ডে অনেক মুসলিম এতে অপমানিত বোধ করবে, তারা ভাববে তারা এ সমাজের অংশ নয়। আমরা দেখতে এসব নারীর মতো নই।" তবে মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্য অনেকে এ নিষেধাজ্ঞা সমর্থন করেন। বোরকা-নিকাব নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে ডেনমার্কে বিক্ষোভ বার্ন শহরের ইমাম মুস্তাফা মেমেতি বিবিসিকে বলেন, এই প্রচারাভিযানের পেছনে হয়তো ইসলামভীতির মানসিকতা কাজ করেছে, কিন্তু তিনি এই নিষেধাজ্ঞা সমর্থন করেন - কারণ এটা সুইৎজারল্যান্ডের মুসলিম নারীদের মুক্তির সহায়ক হবে। ভোটের আগে এসভিপি দলের এমপি ওয়াল্টার ওবম্যান মুসলিমদের মুখঢাকা পোশাককে "উগ্র রাজনৈতিক ইসলামের প্রতীক" বলে বর্ণনা করে বলেন, ইউরোপে ক্রমাগত এর প্রভাব বাড়ছে এবং সুইৎজারল্যান্ডে এর কোন স্থান নেই। এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বলেছে। সংগঠনটি একে একটি "বিপজ্জনক নীতি" হিসেবে চিহ্নিত করে বলছে, এটি "নারীর অধিকার, মত প্রকাশ ও ধর্মের স্বাধীনতার লংঘন।" বিবিসি বাংলায় আরো খবর: 'আমি আর বেঁচে থাকতে চাইনি'- অপরা-র সাথে সাক্ষাৎকারে মেগান ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রথম নারী স্নাতক কাদম্বিনী তালেবান হঠাৎ আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে, মার্কিন সতর্কতা বাংলাদেশে নারীবাদীদের নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা হয় কেন? সুইৎজারল্যান্ডে এক গণভোটে মুসলিম নারীদের বোরকা বা নিকাবসহ প্রকাশ্যস্থানে মুখ-ঢাকা পোশাকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে ভোট পড়েছে। +text: মায়ের কবরে মোনাজাত করছেন প্রয়াত হামিদা বেগমের ছেলে মুকুল শেখ রাজবাড়ির দৌলতদিয়ায় বহু পুরনো যৌন-পল্লীতে প্রথমবারের মত একজন যৌনকর্মীর পুরোপুরি ইসলামি প্রথা মেনে জানাজা পড়িয়ে দাফন হয়েছে। পরে চেহলামেরও আয়োজন করা হয়। প্রয়াত যৌনকর্মী হামিদা বেগমের জানাজায় হাজির ছিলেন প্রায় দুশ মানুষ। আর চেহলামের দাওয়াতে সাড়া দিয়েছিলেন চারশোরও বেশি লোক। যদিও যৌন ব্যবসা বাংলাদেশে বৈধ, কিন্তু যৌনকর্মীরা কার্যত অচ্ছুত। মৃত্যুর পর ধর্ম-মতে তাদের দাফন-কাফনের নজির একেবারেই বিরল। যৌনকর্মীদের মৃত্যু হলে তাদের জানাজা পড়াতে মৌলভিরা রাজী হননা। সাধারণত মৃত যৌনকর্মীদের গোপনে কবর দেয়া হয়, অথবা মৃতদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেওযা হয়। কিন্তু গত সপ্তাহে দৌলতদিয়া ঘাটে হামিদা বেগমের ক্ষেত্রে যা ঘটেছে, তা সত্যিকার অর্থেই ব্যতিক্রম। পদ্মাপারের এই যৌন-পল্লীটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং শত বছরের পুরনো । এখানকার বাসিন্দাদের মতে, কোনো যৌনকর্মীর জানাজা করে দাফন বা তারপর চেহলামের ঘটনা আগে কখনও হয়নি। হামিদা বেগমের জানাজা পড়াতে ইমামকে রাজী করাতে ভূমিকা রেখেছিলেন স্থানীয় পুলিশ প্রধান আশিকুর রহমান। তাকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, "ইমাম প্রথমে জানাজা পড়াতে রাজী হচ্ছিলেন না। আমি তাকে বললাম, ইসলামে কি কোথাও নির্দেশ আছে যে যৌনকর্মীর জানাজা পড়ানো নিষেধ। আমার এই প্রশ্নের কোনো উত্তর ইমাম সাহেবের ছিলনা।" দৌলতদিয়া ঘাটের যৌন-পল্লীটি একশ বছরেরও বেশি পুরনো পরে ঐ ইমাম জানাজা পড়াতে রাজী হন। মি রহমান বলেন, "অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা হয়েছিল সেদিন। জানাজায় অংশ দিতে অনেক মানুষ অনেক রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলেন। যৌনকর্মীদের চোখে পানি টলটল করছিল।" ঝুমুর বেগম নামে স্থানীয় যৌনকর্মীদের একজন নেত্রী হামিদা বেগমের জানাজা পড়ানোর দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন। মৃত্যুর পর যৌনকর্মীদের করুণ পরিণতি সম্পর্কে তিনি বলেন, "আমরা যদি কাউকে দাফন করতে যেতাম, গ্রামবাসীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের তাড়া করতো।" প্রয়াত হামিদা বেগমের মেয়ে লক্ষ্মী, যিনি নিজেও একজন যৌনকর্মী, এএফপিকে বলেন, "আমি স্বপ্নেও ভাবিনি যে এত সম্মানের সাথে আমার মায়ের শেষ বিদায় হবে।।" "আমাকে মাকে মানুষ হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে" - বলেন তিনি। তিউনিসে উচ্ছেদ হওয়া বৈধ যৌনকর্মীরা যেমন আছেন যৌনকর্মীর বদলে খদ্দেররা কেন যাচ্ছে সেক্স ডলের কাছে আরো খবর: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা হঠাৎ বাড়লো চীন এবং সেই ভাইরাস, যা সবকিছুকেই হুমকিতে ফেলছে অনেকেই মালয়েশিয়া যাচ্ছিলেন বিয়ের পাত্রী হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে 'শত্রু সম্পত্তি' নিলামে তুলছে ভারত সরকার রোহিঙ্গা ট্রলারডুবি: নিখোঁজ ৫০ জনকে পাওয়ার আশা ত্যাগ দেওবন্দ 'সন্ত্রাসবাদের গঙ্গোত্রী', বললেন ভারতের মন্ত্রী সিরিয়াকে হুঁশিয়ার করে দিলেন তুরস্কের এরদোয়ান বাংলাদেশে যৌনকর্মীদের জন্য গত ৬ই ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ছিল এক মোড় ঘোরানো অধ্যায়। +text: বোরহানউদ্দিনে রোববারে সহিংস বিক্ষোভের কথিত এই ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকে ইসলামের নবীকে নিয়ে কটুক্তি করে দেয়া একটি পোস্টকে ঘিরে এর আগে তিন দিন ধরে বোরহানউদ্দিনে বিক্ষোভ চলছিল। রোববার সকালে বোরহানউদ্দিনের ঈদগাহ মাঠে 'তৌহিদী জনতা'র ব্যানারে একটি সমাবেশে আসা লোকজনের সাথে এক পর্যায়ে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় পুলিশ ���ুলি চালালে ৪ জন নিহত ও পুলিশ সহ বহুলোক আহত হয়। কিন্তু কী ভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল? এ প্রশ্নের জবাবে ভোলার সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদের নেতা মাওলানা মোহাম্মদ তাজউদ্দিন বলছিলেন, প্রশাসনের চাপে রোববার তাদের বিক্ষোভ সমাবেশ নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ করে দেবার কারণে সহিংস পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। "সমাবেশে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন আসছিল। কিন্তু সময়ের আগেই সমাবেশ শেষ করে দেয়ার কারণেই পরিস্থিতি সেদিন খারাপ হয়" - বলেন তিনি। "পুলিশেরও হয়তো তেমন প্রস্তুতি ছিল না পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। আর তৌহিদী জনতাও হয়তো ক্ষুব্ধ হয়েছে। তারাও প্রতিবাদী হয়েছিল।" বিবিসি বাংলায় আরো খবর: 'এসপি সাহেব বললেন, স্যার আমাদের বাঁচান' বোরহানউদ্দিনের এমপি আলী আজম বলেছেন, এই ভিডিও দেখে তারা দোষীদের চিহ্নিত করবেন রোববারের সংঘর্ষ এবং পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে বোরহানউদ্দিন থানায় যে মামলা হয়েছে তাতে 'অজ্ঞাত ৪/৫ হাজার ব্যক্তিকে' অভিযুক্ত করা হয়েছে। স্থানীয় সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, এই মামলার কারণে সেখানে আতংক দেখা দিয়েছে । বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য নামে এক ব্যক্তির ফেসবুক আইডি হ্যাক করে ইসলামের নবী মোহাম্মদকে নিয়ে মেসেঞ্জারে যে পোস্ট দেয়া হয়েছিল, তার সাথে জড়িত সন্দেহে দু'জনকে পুলিশ আটক করে। ভোলার পুলিশ সুপার সরকার মো: কায়সার বলছিলেন, এ নিয়ে প্রশাসনের সাথে আলেম-ওলামাদের এক আলোচনায় সমাবেশের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ব্যাপারে কথা হয়েছিল। কিন্তু তার পরও ''তৌহিদী জনতা''র ব্যানারে রোববার বিক্ষোভ করা হয়। "আলোচনায় আমরা বিশ্বাস করেছিলাম যে তারা আর বিক্ষোভ করবে না। কিন্তু রোববার সকালে মাইক লাগানোর খবর পেয়ে আমি সেখানে যাই" - বলেন পুলিশ সুপার। "তারা বলেন যে, অল্প কিছু লোক আসতে পারে এবং নেতারা বক্তব্য দিয়ে সমাবেশ শেষ করবেন। সেটাই হলো।" "কিন্তু হঠাৎ করে সেখানে উত্তেজনা শুরু হলো এবং তা চললো। কেন এটা হলো, তা তদন্ত সাপেক্ষ" - বলেন পুলিশ সুপার। সরকার সজাগ সরকারের একাধিক সিনিয়র মন্ত্রী বলেছেন, ভোলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোন পরিস্থিতি সৃষ্টির সুযোগ যাতে কেউ নিতে না পারে, সে ব্যাপারে সরকার সজাগ রয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ঘটনার তদন্ত এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন। মাদ্রাসা ভবন��র দোতলায় এখনো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে রোববারে সহিংস বিক্ষোভের চিহ্ন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া বলছিলেন, আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং নিহতদের ক্ষতিপূরণেরও ব্যবস্থা করা হবে। 'তবে তদন্ত এবং আইনগত ব্যবস্থাগুলোর ক্ষেত্রে কিছুটা সময় প্রয়োজন' বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। তিনি বলছিলেন, "আমরা আগেও দেখেছি, রামু কিংবা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঘটনা যা নয় তা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে কিছু মতলববাজ মানুষ উত্তেজনা সৃষ্টি করে, নিরাপরাধ মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। এটা দুর্ভগ্যজনক।" "মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকালই নির্দেশনা দিয়েছেন যাতে করে সকল মানুষের নিরাপত্তা দেয়া হয়। এর পাশাপাশি সেখানে আহতদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। আর নিহতদেরও ক্ষতিপূরণ অবশ্যই দেয়া হবে।" ভোলায় রোববারের বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার ঢাকা এবং বরিশালে তৌহিদী জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ করা হয়েছে। বিরোধীদল বিএনপি বুধবার এ ব্যাপারে এক বিক্ষোভের কর্মসূচি দিয়েছে। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: ভোলার ঘটনায় মামলা, হাজার হাজার আসামী ধর্ম অবমাননার গুজব তুলে হামলা, কৌশল একই ক্রিকেটে ধর্মঘট: এখনো 'কোন পক্ষেই নেই' মাশরাফী বিশ ডলার নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের বিরোধ কীসের? একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে ভোলার বোরহানউদ্দীনে সহিংস বিক্ষোভ ও পুলিশের গুলির ঘটনায় রোববার চারজন নিহত হওয়ার পর সেখানকার পরিস্থিতি এখনো থমথমে। +text: ভারতীয় এই তিনটি টিভি চ্যানেল বাংলাদেশিদের কাছে অনেক জনপ্রিয় জি-নেটওয়ার্কের চ্যানেল জি-বাংলা বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। বাংলাদেশের টেলিভিশন অনুষ্ঠান কেন দর্শক টানতে পারছে না, কেন বাংলাদেশের টিভি দর্শকেরা ভারতীয় চ্যানেলমুখী, তা নিয়েও গত বেশ কয়েক বছর ধরেই আলোচনা চলছে। কয়েক বছর আগে করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের এক জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশে নারীদের ৯০ শতাংশ টেলিভিশন দেখেন। যদিও এদের ৬০ শতাংশই দেখেন স্টার জলসাসহ ভারতীয় বাংলা চ্যানেলগুলো। কেন ভারতীয় চ্যানেল পছন্দ করেন দর্শকেরা, কেন বাংলাদেশের অনুষ্ঠান তাদের আকর্ষণ করেনা? বাংলাদেশে ভারতীয় বাংলা সিরিয়ালের জনপ্রিয়তা কেন? জি-বাংলাসহ কয়েকটি ভারতীয় চ্যানেল দেখা যাচ্ছে না বাংলাদেশ�� কেন বেশি জনপ্রিয় ভারতের বাংলা চ্যানেল কেন ভারতীয় চ্যানেল জনপ্রিয়? বাংলাদেশের টিভি দর্শকদের বড় অংশের কাছে ভারতের বাংলা চ্যানেলগুলোর দৈনিক সোপ অপেরাগুলো জনপ্রিয়। এগুলোর দর্শক প্রধানত নারী এবং অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ নারী-পুরুষ। আরেকটি অংশের কাছে জনপ্রিয় হচ্ছে বিভিন্ন খেলাধুলার চ্যানেল, এগুলোর দর্শকদের বড় অংশটি তরুণ ও নানা বয়সের পুরুষ। কিন্তু বাংলাদেশের দর্শকদের কাছে দেশি টিভি অনুষ্ঠানের চেয়ে কেন ভারতের চ্যানেল জনপ্রিয়, এমন প্রশ্নের জবাবে ব্যাপক সংখ্যক দর্শক বিজ্ঞাপন আধিক্যের অভিযোগ তুলেছেন। নাজিয়া পারভীন নামে একজন গৃহিনী বলছেন, ভারতীয় চ্যানেলে বিজ্ঞাপন কম। "তাছাড়া ওদের প্রতিটা অনুষ্ঠানের পেছনে ওরা প্রচুর খরচ করে, মানে ওদের কাপড়চোপড়, গৃহসজ্জা এসবে অনেক মনোযোগ দেয়, যেটা দেখতে ভালো লাগে।" "এর বাইরে ওদের বাচনভঙ্গিও আমার কাছে যথার্থ মনে হয়। যেমন ওরা আইছস-গেছস বলে না, কিন্তু বাংলাদেশের নাটকে দেখবেন কাজের ছেলেও যে ভাষা বলে নাটকের নায়কও একই ভাষায় কথা বলে।" বিবিসি বাংলার ফেসবুক পাতায় অতুল কুমার লিখেছেন, "আসলে আমাদের দেশের চ্যানেলগুলো যেদিন থেকে মেয়েদের মন বুঝে প্রোগ্রাম বানাতে পারবে, সেদিন থেকে আর আমাদের বিদেশি চ্যানেল বিশেষ করে স্টার জলসা আর জি'টিভির উপর ক্ষোভ ঝাড়তে হবে না। রুচি সম্মত অনুষ্ঠান না বানালে আমাদের দেশীয় চ্যানেলগুলোকে এইরকম দর্শকের পিছনে ঘোড়দৌড় করেই বেড়ানো লাগবে!" আল মামুন বলেছেন, "পার্থক্য বাংলাদেশের চ্যানেলে বস্তা ভরা এ্যাড।" রাসেব মল্লিক বলেছেন, "মূল পার্থক্য হল ভারতীয় চ্যানেলে বিজ্ঞাপন কম,আর সিরিয়ালগুলো প্রতিদিন চলে তাই যারা দেখে তাদের একটা এডিকশন হয়ে যায়, যেটা ক্ষতিকর।" নারীদের মধ্যে ভারতীয় নাটকের জনপ্রিয়তা বেশি হলেও অনেক পুরুষই নিয়মিতই এই নাটকগুলো দেখেন কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক সানজিদা নীরা বলছেন, ভারতীয় সোপগুলোতে দেখানো 'ফ্যান্টাসি' দেখতে পছন্দ করেন দর্শক। "রূপকথার গল্পের মতন যেসব ফ্যান্টাসি সেখানে দেখানো হয়, সেটা বাংলাদেশে হয় না। যেমন ঘরের মধ্যে অনেক গয়না-গাটি পরে বসে আছে, বা অসম্ভব সাংসারিক একটা ষড়যন্ত্র দেখানো হচ্ছে।" "আমার মনে হয়, মানুষ নিজের বাস্তব জীবনের বাইরে বেরিয়ে একটা ফ্যান্টাসির দুনিয়া দেখতে চায়, যেটা তাকে হালকা একটা বিনোদন দেবে। এছাড়া সময়সূচী একটা ব্যাপার, নির্দিষ্ট করে রবিবার-সোমবার মনে রাখতে হয় না।" তবে তিনিও বিজ্ঞাপন আধিক্যের কারণ উল্লেখ করেছেন যেটা, তার ভাষায়, দর্শকের মনোযোগে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। সিরিয়ালের নায়ক নায়িকাদের নামে পোশাকও বিক্রি হতে দেখা যায় নির্মাতারা কী বলছেন? বিজ্ঞাপন আধিক্য ছাড়াও অনেক দর্শকের অভিযোগ যে বাংলাদেশের নাটক বা অনুষ্ঠানে বাস্তবের ছোঁয়া কম থাকে। যেমন গৃহিনী নাজিয়া বলছিলেন, জি-বাংলার একটি শো দিদি নাম্বার ওয়ানে বিভিন্ন বয়েসী নারীদের জীবন সংগ্রামের অভিজ্ঞতা রোজ দেখানো হয়, যেটা দেখে তিনি সাহস পান। এমন কোন শো বাংলাদেশের কোন নির্মাতা বানান না। সেই সঙ্গে নাটকের গল্প আর মান নিয়েও দর্শকদের অভিযোগ রয়েছে অনেক। কিন্তু নির্মাতা শাহনেওয়া কাকলী মনে করেন, বাজেট একটি বিরাট সমস্যা। "আমি ২০০৬ সালে নাটক নির্মাণ শুরু করি, সেসময় আমার একটি টেলিফিল্ম আমি বিক্রি করেছি পাঁচ বা ছয় লাখ টাকায়। নামী নির্মাতা যারা ছিলেন তাদের টেলিফিল্ম বিক্রি হতো সাত লাখ টাকা বা বেশি টাকায়। কিন্তু এখন ছোটছোট নির্মাতাদের দিয়ে দুই লাখ টাকায় একটা নাটক বানানো হচ্ছে। সুতরাং সবকিছুতেই মানের বিষয়ে কম্প্রোমাইজ করতে হয়।" "সেই সঙ্গে ওদের নাটকের বিষয়বস্তু ও উপস্থাপন আমাদের থেকে আলাদা, ওদের নাটকে নাটকীয়তা আছে। সেটা আমাদের এখানে অনেক সময়ই অনুপস্থিত থাকে।" মিজ কাকলী বলছিলেন, ভারতে দেখা যায় একটি উপন্যাস নিয়ে বড় আঙ্গিকে একটি ধারাবাহিক বানানো হলো, কিন্তু বাংলাদেশে সেটা অনেক সময়ই দেখা যায়না। তিনি মনে করেন, এর পেছনে বাংলাদেশের সামগ্রিক 'সাংস্কৃতিক চর্চার দেউলিয়াপনা' দায়ী। "বিনিয়োগকারীরাও দেখা যাবে উপন্যাস কেন্দ্রিক প্রকল্পে পয়সা দেবে না। কটা উপন্যাসের জন্য অনুদান দেয় এমনকি চলচ্চিত্রেও বলেন?" কী বলছেন কর্তাব্যক্তিরা? বিভিন্ন টেলিভিশনে যারা অনুষ্ঠান পরিকল্পনা করেন, তারা বলছেন, দর্শকের রুচি অনুযায়ী অনুষ্ঠান বানানোর জন্য নানারকম পদক্ষেপ তারা নিচ্ছেন। কিন্তু এখনো কোন ফল কেন দেখা যাচ্ছেনা, এমন প্রশ্নের জবাবে বেসরকারি এসএ টিভির অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান জেরিন আলতাফ বলছেন, টেলিভিশনের মালিক, বিজ্ঞাপনদাতা এবং সরকার সব পক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে গত বেশ কয়েক ব���র ধরেই। "কিন্তু ফল দেখতে হয়তো আমাদের আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে। এখনো পর্যন্ত যেটা দেখা যায় যে বিজ্ঞাপনের দাম আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে, সেটা অনুষ্ঠানের ফাঁকে বেশি বিজ্ঞাপন দেখানোর একটি বড় কারণ। কিন্তু বিদেশী চ্যানেলে কিন্তু ঠিকই বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন বিজ্ঞাপন দাতারা।" তবে, অনুষ্ঠান পরিকল্পনা কিংবা নাটকের গল্পে নতুনত্ব আনায় কোন সংকট রয়েছে কিনা সেই প্রশ্নর জবাবে তিনি বলেছেন, "সেটাও দেখা হচ্ছে, আমরা ক্রমাগত চেষ্টা চালাচ্ছি কিন্তু এখনো ফলাফল দেখা যাচ্ছে না, এটাই সত্যি কথা।" বাংলাদেশে ভারতীয় জি-নেটওয়ার্কের চ্যানেলগুলো বন্ধের একদিন পরই আবার খুলে দেয়া হয়েছে। এই নেটওয়ার্কের চ্যানেলগুলো বন্ধ করা এবং খুলে দেয়া নিয়েই এখন সরগরম বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। +text: ভারতের নির্বাচনে কয়েক হাজার রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা অংশ নেয়। গত দুই মাস ধরে ৭৩ বছর বয়সী এই ব্যক্তি এলাকায় ঘুরে-ঘুরে তার পক্ষে নির্বাচনী সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন। "আমি জনগণকে দেখাতে চাই, পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রে দলীয় রাজনীতি একমাত্র উপায় নয়। আমি আমার মতো আরো স্বতন্ত্র প্রার্থী দেখতে চাই। এর মাধ্যমে আমরা দুর্নীতি দূর করতে পারবো" বলছিলেন মি: খন্দকার। তিনি যে সংসদীয় আসনে লড়ছেন সেখানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৩শে এপ্রিল। গত ১১ই এপ্রিল ভারতের নির্বাচন শুরু হয়েছে। সাত দফায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়ে ভোট গণনা শুরু হবে ২৩শে মে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয়া মি: খন্দকার আশা করেন তিনি এক সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী হবেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী হতে পারলে তিনি প্রত্যেক ভারতীয় নাগরিককে ১৭ হাজার রুপী দেবেন। তাঁর মতে, অন্য জায়গায় খরচ কমালে এ অর্থ দেয়া কোন কঠিন কাজ নয়। ১৯৮০'র দশকের শেষ পর্যন্ত মহারাষ্ট্র প্রদেশের বিদ্যুৎ সংস্থায় কাজ করেছেন। মি: খন্দকারকে এখন দেখা যায় শহরজুড়ে একটি স্টিলের ঠেলাগাড়ি নিয়ে ঘুরছেন। সে গাড়িতে তাঁর নির্বাচনী প্রতীক লাগানো রয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে "বুট জুতার বিজয়"। কারণ তার নির্বাচনী প্রতীক বুট জুতা। ভোট চাইছেন বিজয়প্রকাশ খন্দকার তিনি যখন শহরজুড়ে এই ঠেলাগাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়ান তখন এটি এক মজার পরিবেশ তৈরি করে। অনেকে তাকে উপেক্ষা করে। আবার অনেকে তার সাথে সেলফি তুলতে চায়। মি: খন্দক���র ২৪টি নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছে স্থানীয় সরকার নির্বাচন থেকে শুরু করে জাতীয় নির্বাচন। ২০১৪ সালে ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ৩০০০ স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিল। এদের মধ্যে মাত্র তিনজন জয়লাভ করেছিল। ভারতের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সবচেয়ে ভালো ফলাফল করেছিল ১৯৫৭ সালের নির্বাচনে। তখন ৫৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিল। ভারতের নির্বাচনী আইন অনুযায়ী যেসব প্রার্থী জাতীয় রাজনৈতিক দল থেকে মনোনয়ন পায় তাদের নাম ব্যালট পেপারের সবচেয়ে উপরের দিকে থাকে। এরপর থাকে প্রাদেশিক দলগুলোর প্রার্থীদের নাম। সর্বশেষ থাকে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নাম। নির্বাচনের জন্য বিজয়প্রকাশ খন্দকার তার ডাক নাম পরিবর্তন করে রেখেছেন যেটির প্রথম অক্ষর শুরু হয়েছে ইংরেজি সর্বশেষ বর্ণ 'জেড' দিয়ে। ব্যাটল পেপারে নাম সবার শেষে রাখার জন্য তিনি নামের এ পরিবর্তন করেছেন। "ভোটারদের কাছে আবেদন হচ্ছে, ব্যালট পেপারে সর্বেশেষ প্রার্থীকে ভোট দিন," বলেন মি: খন্দকার। বিবিসি বাংলার আরো খবর: পশ্চিমবঙ্গের ভোটে ধর্ম কেন এবার গুরুত্ব পাচ্ছে ? ভারতের নির্বাচনে বাংলাদেশে যে প্রভাব পড়তে পারে ভারতের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পুনের শিবাজি নগর এলাকার বাসিন্দা বিজয়প্রকাশ খন্দকার। +text: সানি লিওন অথচ ভারতে একজন শিল্পীর যে ন্যূনতম অধিকারটুকু পাওয়ার কথা, ভারতের সেই সবচেয়ে বড় ইন্টারনেট তারকা ও সাবেক পর্নস্টার সানি লিওন বোধহয় সেটুকুও পাচ্ছেন না। সামনের মাসে ব্যাঙ্গালোর শহরে তার প্রথম নাচের 'লাইভ পারফরম্যান্স' করার কথা, কিন্তু তাতে ভারতীয় সংস্কৃতি রসাতলে যাবে - এই যুক্তি দেখিয়ে প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে স্থানীয় কন্নড় গোষ্ঠীগুলি। এর আগে গত বছরেও ব্যাঙ্গালোরে বিভিন্ন গোষ্ঠীর বাধার মুখে কর্নাটক সরকার সানি লিওনের অনুষ্ঠান বাতিল করে দিয়েছিল। সানি লিওনের বায়োপিকের বিরুদ্ধে শিখদের প্রতিবাদ শুধু তা-ই নয়, মাসকয়েক আগে তিনি যখন 'করনজিৎ কাউর : দ্য আনটোল্ড স্টোরি অব সানি লিওন' নামে নিজের বায়োপিক রিলিজ করেছিলেন, তখনও সেখানে কাউর শব্দের ব্যবহার নিয়ে তীব্র আপত্তি জানায় নানা শিখ সংগঠন। তাদের যুক্তি ছিল, 'কাউর' শিখ সমাজের নারীদের জন্য অত্যন্ত সম্মানজনক একটি পদবী - এবং যিনি নিজের ধর্ম ত্���াগ করেছেন তার আর নিজের নামে কাউর ব্যবহার করার কোনও অধিকার নেই। ফলে একটা জিনিস স্পষ্ট, পর্ন-তারকার অতীত পেছনে ফেলে সানি লিওন যতই নিজেকে বলিউডের একজন শিল্পী ও অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান না কেন - অনেকেই এখনও তাকে সেই পুরনো প্রিজম দিয়েই দেখতে চাইছেন। ব্যাঙ্গালোরে যেমন 'কর্নাটক রক্ষণ ভেদিকে' নামে একটি কট্টরপন্থী সংগঠন অনেকদিন ধরেই সানি লিওনের প্রস্তাবিত অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। দিল্লির মাদাম তুসোঁতে নিজের মোমের মূর্তির সঙ্গে সানি লিওন এর আগে ২০১৮র ইংরেজি নতুন বছরের ঠিক আগে ব্যাঙ্গালোরে সানি লিওনের যে অনুষ্ঠান করার কথা ছিল তা এদের বাধাতেই ভেস্তে যায়। এখন ৩রা নভেম্বর শহরে সানি লিওনের আবার যে প্রোগ্রাম করার কথা, তার বিরুদ্ধেও এখন এরা কর্মসূচী নিচ্ছেন। কর্নাটক রক্ষণ ভেদিকে-র নেতা হরিশ বিবিসিকে বলছিলেন, "সানি লিওন যেদিন ভদ্রভাবে শাড়ি পরে পারফর্ম করবেন, তখন হয়তো আমরা সেটা মেনে নেওয়ার কথা ভাবতে পারি। কিন্তু ছোট ছোট স্কার্ট পরে নাচ-গান করে তিনি সংস্কৃতিকে উচ্ছন্নে পাঠাবেন, সেটা কিছুতেই হতে দেওয়া যায় না।" এমন কী ওই সংগঠনের তরুণী সদস্যরাও মনে করছেন - ব্যাঙ্গালোরে এমনিতেই মেয়েরা নিরাপদ নন, এরপর শহরে যদি সানি লিওন এসে নাচগান করেন তাহলে নাকি নারী নিরাপত্তা আরও বিপন্ন হবে। এক তরুণী যেমন বলছিলেন, "মানছি উনি একজন অভিনেত্রী, ব্যক্তিগত জীবনে তিনি যা খুশি করতে পারেন - কিছু বলার নেই। কিন্তু পাবলিক লাইফে সেটা হয় না। সানি লিওন যা করেছেন, একজন মেয়ে হিসেবে আমি সেটা করলে কেউ মানবে না!" "সানি লিওনের ইতিহাস সবাই জানে। তিনি কিছুতেই কর্নাটক বা ভারতের সংস্কৃতির প্রতিনিধি হতে পারেন না" - এই জাতীয় কথাবার্তাও শোনা যাচ্ছে ব্যাঙ্গালোরে কান পাতলেই। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: করণজিৎ কৌরই কি আসল সানি লিওন? ভারতে 'অসহিষ্ণুতা' বিতর্কে যোগ দিলেন সানি লিওন পর্ন মুভির পর এবার লেখালেখিতে সানি লিওন বছরকয়েক আগে সানি লিওনের জিসম-টু ছবির বিরুদ্ধেও ভারতে প্রতিবাদ হয়েছিল পাঞ্জাবের বিভিন্ন শিখ সংগঠন যখন তার বায়োপিকের 'করনজিৎ কাউর' নামকরণের বিরোধিতা করেছিল, তখনও তাদের যুক্তি ছিল সানি লিওন আসলে তাদের ধর্মেরই অবমাননা করেছেন। অকালি দলের নেত্রী ও শিরোমণি গুরদোয়ারা প্রবন্ধক কমিটির দু-দুবারের প্রেসিডেন্ট বিবি জাগির কাউরও তখন বলেছিলেন, "উনি জীবনে আগে কী করেছেন, তার ভূমিকা আগে কী ছিল সেটা আমি জানি না - জানার দরকারও নেই। কিন্তু তার এরকম একটা ছবি বানানোর আগে অবশ্যই খেয়াল রাখা উচিত ছিল শিখ ধর্মকে যাতে কোনওভাবে অপমান না-করা হয়!" তবে আমেরিকা ও কানাডার অ্যাডাল্ট ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এক সময়ে সানি লিওনের ভূমিকার জন্যই যে তাকে 'কাউর' বলে মানতে শিখ সমাজের একটা অংশের আপত্তি, সেটা অবশ্য মোটেই গোপন ছিল না। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেনস স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক শমিতা সেন মনে করছেন, "আমার পছন্দ না-হলেই তোমাকে আঁকতে দেব না, বলতে দেব না - এই জাতীয় যে সার্বিক অসহিষ্ণুতার আবহ আজকের ভারতে গড়ে উঠেছে, এখানেও সেটারই প্রতিফলন ঘটছে বলে আমার ধারণা।" "আর এক্ষেত্রে সানি লিওনকে পারফর্ম করতে দেব না কারণ তিনি পর্নস্টার ছিলেন, এই যুক্তিটাও ভীষণ হাস্যকর। কারণ আমাদের দেশে পর্ন তো এমনিতেই কম জনপ্রিয় নয়! আর ভারতে চারিত্রিক নৈতিকতার সংজ্ঞাই বা কী, যেখানে বিশ্বের সেক্স ইন্ডাস্ট্রির প্রধান উৎস কামসূত্রের জন্মই এদেশে!", বলছিলেন অধ্যাপক সেন। বিবিসি হিন্দির সঙ্গে কথোপকথনে সানি লিওন সেই উনিশ শতকে নটি বিনোদিনীর সময় থেকেই ভারতে থিয়েটার বা চলচ্চিত্র জগতের অভিনেত্রীরা যে ঠিক পর্ন ইন্ডাস্ট্রি না হোক - দেহপসারিনী বা বাঈজির মতো অনুরূপ পেশা থেকেই উঠে এসেছিলেন, সে কথাও তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন। তবে এই যে তার অনুষ্ঠান করাতে বারবার বাধা আসছে, কিংবা বাবা-মার দেওয়া নাম ব্যবহারেও আপত্তি উঠছে - সানি লিওন নিজে অবশ্য তা নিয়ে নিজে খুব একটা ভাবিত নন বলেই দাবি করছেন। গত মাসেই বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, "আমি ভারতের কিছু পাল্টাতে পেরেছি কি না জানি না, ভারত কিন্তু আমার অনেক কিছু পাল্টে দিয়েছে। এটা দুনিয়ার সেই হাতে গোনা দেশগুলোর একটা, যেখানে আপনি যদি একটা স্বপ্ন নিয়ে আসেন তাহলে সেই স্বপ্নকে সত্যি করা সম্ভব।" সাঁইত্রিশ বছর বয়সে এসে করণজিৎ কাউর ভোহরা ওরফে সানি লিওন হাজারো প্রতিকূলতার মুখেও ভারতে তার স্বপ্ন সত্যি করার সেই লড়াই এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন। "হ্যাঁ, ভারতে জার্নিটা খুব কঠিন, হয়তো খুব নির্মম ও মায়াদয়াহীন - সবই ঠিক। কিন্তু আমি তবুও বিশ্বাস করি ভারতে আপনি আপনার স্বপ্নকে বাস্তব করে তুলতে পারেন" - বলছেন তিনি। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: নানা দেশের মানুষের যৌনজীবন: মজার কিছু ত��্য যখন রাস্তাঘাটে পুরুষরা যৌন উৎপীড়নের শিকার হয় "অপরিচিত পুরুষের সাথে যখন ফেসবুকে আমার পরিচয় হলো" টানা বেশ কয়েক বছর ধরে ভারতে তার নামই সবচেয়ে বেশি গুগল সার্চ করা হয়। পাশের দেশ বাংলাদেশেও তাই। তার বিভিন্ন ভিডিও ক্লিপিংস, সাক্ষাৎকার স্মার্টফোনের মারফত হাতে হাতে ঘোরে। +text: প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বরাবরই তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করছেন। হাউজ অফ রিপ্রেজেনটেটিভের নিয়ন্ত্রণ বিরোধীদল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির হাতে। হাউজ জুডিশিয়ারি কমিটির প্রধান জেরি ন্যাডলার এবিষয়ে আইনের যে দুটি ধারা প্রকাশ করেছেন তার প্রথমটিতে মি. ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের এবং দ্বিতীয়টিতে তার বিরুদ্ধে সংসদের কাজে বাধা দানের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক স্বার্থে মি. ট্রাম্প ইউক্রেইনকে দেয়া অর্থ সাহায্য স্থগিত করেছিলেন। তবে মি. ট্রাম্প বরাবরই এই অভিযোগগুলি অস্বীকার করে আসছেন, এবং তার বিচারের এই পুরো প্রক্রিয়াকে 'পাগলামি' বলে বর্ণনা করেছেন। জুডিশিয়ারি কমিটি যদি এই দুটি ধারা অনুমোদন করে তাহলে সেটি হাউজ অফ রিপ্রেজেনটেটিভে পূর্ণাঙ্গ ভোটের জন্য তোলা হবে। আর সেখানে সেটি পাশ হলে আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত সিনেটে সংসদীয় বিচার শুরু হবে। প্রেসিডেন্টের বিচারের ওপর আইন নিয়ে কথা বলছেন জেরি ন্যাডলার, হাউজ জুডিশিয়ারি কমিটির প্রধান। বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে ভারতে তীব্র প্রতিবাদ, বন্‌ধ রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার: পাথরের মতো বসে ছিলেন সু চি অমিত শাহের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি গত সেপ্টেম্বর মাসে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি মার্কিন কংগ্রেসের কাছে অভিযোগ করেন যে অর্থ সাহায্য স্থগিত রাখার প্রশ্নে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একটি টেলিফোন সংলাপ তিনি নিজে শুনেছেন। বিবিসির উত্তর আমেরিকা বিষয়ক সম্পাদক জন সোপেল বলছেন, এটা যে হবে তা বোঝাই যাচ্ছিল। কয়েকমাস ধরেই তিনি এ নিয়ে খবর পাঠাচ্ছিলেন। "তার পরও জুডিশিয়ারি কমিটির সভাপতি যখন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে বড় মাপের অপরাধ এবং বিধিবহির্ভূত কাজের অভিযোগ করেন তখন আমার গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায়।" হাউজ অফ রিপ্রেজেনটেটিভ যদি প্রেসিডেন্টের বিচারের পক্ষে ভোট দেয় তাহলে মি. ট্রাম্প দু'জন সাবেক প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু জনসন (১৮৬৮) এবং বিল ক্লিনটনের (১৯৯৮) কাতারে গিয়ে দাঁড়াবেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে শুধু এই তিনজন প্রেসিডেন্টের বিচার প্রক্রিয়া এভাবে শুরু হয়েছিল। কিন্তু এসবই ইতিহাস। জন সোপেল বলছেন, প্রশ্ন হলো এর পর কী ঘটতে যাচ্ছে? এই প্রক্রিয়া কি মি. ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচনের আশাকে ধূলিসাৎ করবে, নাকি মার্কিন ভোটাররা একে তাদের প্রেসিডেন্টের ওপর হামলা প্রচেষ্টা হিসেবে দেখবে? মার্কিন সংসদের উচ্চ কক্ষ হাউজ অফ রিপ্রেজেনটেটিভের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সংসদীয় বিচারের পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন। +text: বার্মিংহামের হোটেল রুম থেকে ফেসবুক লাইভ করছেন তাসকিন আহমেদ "হোটেলে বোরড হচ্ছিলাম, তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে কথা বলি।" তাসকিন বলেন, "সেমিইনালে যাওয়া বড় একটা অ্যাচিভমেন্ট (অর্জন), ইনশাল্লাহ ভালো কিছু হবে, দোয়া করবেন।" বৃহস্পতিবার বার্মিংহামে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত। ভক্তদের একের পর এক প্রশ্নের উত্তরে তাসকিন আহমেদ তাদের আশ্বস্ত করেন তারা তাদের শ্রেষ্ঠটা দেওয়ার চেষ্টা করবেন। "আমরা সবসময়ই নিজেদের বেস্টটা দেওয়ার চেষ্টা করি.. সবসময় মনে রাখি আমার দেশের জন্য খেলছি...।" তাসকিন আহমেদ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রথম ম্যাচে দলে ছিলেন না তাসকিন। তবে শুক্রবার কার্ডিফে নিউ জিল্যান্ডের বিরুদ্ধে মরা-বাঁচার ম্যাচে দলে জায়গা পেয়ে দুটি উইকেট নিয়েছেন তিনি। "একটি ম্যাচ খারাপ খেললে কেউ খারাপ ক্রিকেটার হয়ে যায়না। অনেক সময় একটু খারাপ খেললে অনেকে হতাশাজনক মন্তব্য করতে থাকেন, আবার একটু ভালো খেললে মাথায় তোলেন.. তবে এ ধরণের সংস্কৃতির পরিবর্তণ হচ্ছে।" "আমরা দেশের জন্য খেলছি। অনেক সময় অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। অনেক সময় মাসের পর মাস পরিবার থেকে দুরে থাকতে হয়। বাজে মন্তব্য দেখলে কষ্ট হয়।" "দোয়া করবেন আমরা যেন আরো ভালো করতে পারি, মাঝেমধ্যে খারাপ করলেও সাথে থাকবেন, তাহলে আমরা আরো ভালো করবো।" কার্ডিফে শনিবার একজন মাঝবয়সী ইংরেজ মহিলা তাসকিনকে ঝাপটে ধরে গালে চুমু খেয়েছিলেন। অনেক ভক্ত ফেসবুক লাইভের সময় বিষয়টি তোলেন। একজন তাসকিনকে জিজ্ঞেস করেন, সে সময় তার কি অনুভূতি হয়েছিলো। হেসে তিনি বলেন -- "তিনি একজন ফ্যান, তাকে চিনি না, কোনো অনুভূতিই হয়নি।" তাসকিনের এই ফেসবুক লাইভ সম্পর্কে অজ্ঞতা প্রকাশ ��রেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মুখপাত্র রাবিদ ইমাম। টুর্নামেন্ট চলার সময় এ ধরণের ফেসবুক লাইভের অনুমতি কি ক্রিকেটাররা পান? রাবিদ ইমাম বলেন, শুধু ফ্যানদের সাথে মতবিনিমিয় করা যায়। বার্মিংহামের হোটেল রুম থেকে হঠাৎ ফেসবুকে লাইভে এসে বাংলাদেশের বোলিং তারকা তাসকিন আহমেদ বৃহস্পতিবারের চ্যাপিয়নস ট্রফির সেমিফাইনাল ম্যাচের জন্য ভক্তদের শুভকামনা চেয়েছেন। +text: হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হক সোমবার বেলা ১১টার দিকে বাগেরহাটের মোল্লাহাটের উদয়পুর মাদ্রাসার সামনে এই ঘটনা ঘটে। বাগের হাটের একজন পুলিশ কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সেখানকার হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকরা একটি মিছিল বের করার চেষ্টা করছিল। ''আগে থেকেই আমাদের পুলিশ সদস্যরা প্রস্তুত ছিলেন। তারা দ্রুত সেখানে গিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়,'' অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর মোহাম্মদ শাফিন মাহমুদ বলেন। ''সেই সময় তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে মোল্লাহাট থানা ওসিসহ তিনজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে,'' তিনি জানান। তিনি জানান, এরপর থেকেই সেখানকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এই ঘটনায় মোল্লাহাট থানায় একটি মামলা করার প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান। পুলিশের এই বক্তব্যের বিষয়ে হেফাজতে ইসলামের কোন নেতার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। স্থানীয় সংবাদদাতারা বলছেন, হেফাজত নেতা মামুনুল হকের নানা বাড়ি বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার উদয়পুর এলাকায়। রোববার ঢাকার মোহাম্মদপুরের একটি মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হককে। মোহাম্মদপুর থাকার একটি নাশকতার মামলায় সোমবার তাকে সাতদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আরও পড়ুন: রোববার আটকের সময় মামুনুল হক বিতর্কের কেন্দ্রে মামুনুল হেফাজত ইসলামের নেতা হলেও মামুনুল হক আলোচিত হয়ে ওঠেন শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য বিরোধী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। "আমাদের সকলের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এবং ঘোষণা হল আমরা দেশে রাষ্টীয় পর্যায়ে ইসলামকে বাস্তবায়ন করতে চাই। আমাদের সেই প্রচেষ্টা সফল হলে, ইসলামি হুকুমত বাস্তবায়িত ত হলে ভাস্কর্য সরিয়ে না ফেলার কোন অবকাশ থাকবে না" সেই সময় বলছিলেন মামুনুল হক। তখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ মন্তব্য করেছিলেন 'হেফাজত নতুন রাজাকার হয়ে দাঁড়াচ্ছে', যার প্রতিবাদ করে বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিস এর মহাসচিব মামুনুল হক, একই সাথে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করে বলেছেন ভাস্কর্য বিরোধিতার সাথে রাজাকার হওয়ার কোন সম্পর্ক নেই। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিব জন্ম শতবর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে হেফাজতে ইসলামের নেয়া কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে হেফাজতের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ব্যাপক সহিংস রূপ ধারণ করে, এবং সেই সহিংসতায় কমপক্ষে ১৭ জনের মৃত্যু হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের সময় গত ২৬শে মার্চ থেকে তিন দিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়, চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে এবং ঢাকায় বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় হেফাজতের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছে। হাটহাজারী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের থানা আক্রমণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি অফিসে অগ্নিসংযোগসহ নাশকতার নানা ঘটনা ঘটেছে। প্রাণহানি হয়েছে কমপক্ষে ১৭জনের। সেই সহিংসতার পর নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে একটি রিসোর্টে একজন নারীসহ হেফাজত নেতা মামুনুল হকের অবস্থান করার ঘটনা ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। হেফাজতে ইসলামের ডাকা গত ২৮শে মার্চে হরতালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে হরতাল সমর্থকরা গত তেসরা এপ্রিল সোনারগাঁও এলাকায় একটি রিসোর্টে মামুনুল হককে ঘেরাও করে রাখে স্থানীয় কিছু লোক এবং ক্ষমতাসীন দল-সম্পৃক্ত ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীরা। তাদের অভিযোগ, মামুনুল হক একজন নারীকে নিয়ে রিসোর্টে ঘুরতে গিয়েছেন। অন্যদিকে মামুনুল হক বলেন, মহিলাটি তার দ্বিতীয় স্ত্রী। কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর হেফাজতে ইসলামের সমর্থক এবং মাদ্রাসার ছাত্ররা পাল্টা হামলা চালিয়ে সেখান থেকে মি.হককে নিয়ে যায়। এরপর সংসদে দেয়া বক্তব্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শনিবার মামুনুল হক 'অপবিত্র কাজ করে সোনারগাঁও এর রিসোর্টে' ধরা পড়েছেন। "এরা ধর্মের নামে এত কথা বলে, পবিত্রতার নামে এত কথা বলে, এখন অপবিত্র কাজ করে সোনারগাঁও এর রিসোর্টে ধরা পড়েছে দলটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক। এখন সেটা ঢাকার জন্য নানা রকম চেষ্টা করছে তারা।" প��রধানমন্ত্রী সংসদে তার ভাষণে বলেন, "এত আগুন জ্বালাও-পোড়াও করে তিনি (মামুনুল হক) বিনোদন করতে গেলেন রিসোর্টে, একজন সুন্দরী মহিলা নিয়ে। এরা ইসলাম ধর্মের নামে কলঙ্ক। এরা ইসলাম ধর্মকে ছোট করে দিচ্ছে।" "এরা ধর্মকে কলুষিত করে দিচ্ছে, ধর্মের নামে ব্যবসা শুরু করেছে। বিনোদনের এত অর্থ কোথা থেকে আসে?" এমন প্রশ্নও তোলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। জনগণের সম্পত্তি নষ্ট করা এবং ধর্মের নাম নিয়ে 'অধর্মের' কাজের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন প্রধানমন্ত্রী। তবে মামুনুল হক পরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, 'প্রধানমন্ত্রী না জেনে অসত্য বক্তব্য দিচ্ছেন'। আর হেফাজতে ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, তারা 'বিব্রত ও হতভম্ব'। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: মহীসোপানে বাংলাদেশের যে দাবিতে ভারতের আপত্তি কোম্পানীগঞ্জে আবারো উত্তেজনা, আওয়ামী লীগ নেতা গুলিবিদ্ধ লকডাউন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত, শিগগিরই আসছে প্রজ্ঞাপন ডাক্তার ও পুলিশের বিতণ্ডার ভাইরাল ভিডিও নিয়ে যা জানা যাচ্ছে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম সম্পাদক মামুনুল হকের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বাগেরহাটে সংগঠনের সমর্থকদের বের করা মিছিল পুলিশ ছত্রভঙ্গ করতে গেলে এক সংঘর্ষে তিনজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। +text: কম্পিউটার সফটওয়্যারের সাহায্যে টিউমারের মতো একই ধরণের একটি ত্রিমাত্রিক প্রতিকৃতি পুনর্নির্মাণ করা হয় এর ফলে কোন রোগীর শরীর থেকে টিউমারের নমুনা নিয়ে সেটিকে বিস্তারিতভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা যাবে। সেটিকে সবদিক থেকে দেখে প্রতিটা কোষ আলাদাভাবে চিহ্নিত করা যাবে। গবেষকরা বলছেন, এই প্রযুক্তি ক্যান্সার রোগটিকে আরো ভালোভাবে বুঝতে এবং ক্যান্সার মোকাবেলায় নতুন চিকিৎসা বের করতে সহায়তা করবে। আন্তর্জাতিক গবেষণার একটি অংশ হিসাবে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আরো পড়ুন: স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত নারী আরও বেশিদিন বাঁচবেন? কীভাবে বাঁধাকপি ক্যান্সার ঠেকাতে পারে বাংলাদেশেও কেন মেয়েদের মধ্যে ক্যান্সার বাড়ছে? সহজে ক্যান্সার পরীক্ষার পদ্ধতি কীভাবে কাজ করবে? মডেলটিকে ঘুরিয়ে প্রফেসর হ্যানন দেখান যে বেশ কয়েকটি কোষ মূল দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে এটা কিভাবে কাজ করবে? এই পদ্ধতিতে বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে একই সঙ্গে একাধিক ব্যবহারকারী ভিআর সিস্টেমের সাহায্যে টিউমারটি বিশ্লেষণ করতে পারবেন। যুক্তরাজ্যের ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে ক্যামব্রিজ ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক গ্রেগ হ্যানন বিবিসিকে বলছেন, ''এত বিস্তারিতভাবে এর আগে আর টিউমার বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয়নি। ক্যান্সার গবেষণায় এটি একটি নতুন উপায়।'' যদিও মানব কোষের সত্যিকারের আকৃতি পিনের মাথার মতো সামান্য, তবে এই গবেষণাগারের ভিআর প্রযুক্তিতে সেটিকে কয়েক মিটার বড় করে দেখা যায়। টিউমার কোষটিকে আরো ভালো করে বুঝতে ভিআর প্রযুক্তির সাহায্যে গবেষকরা সেসব কোষের ভেতরও ঘুরে দেখতে পারেন। আরো পড়তে পারেন: অসম প্রচারণার শেষে ভোটের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখে বাংলাদেশের নির্বাচন কেন নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সংখ্যা এত কম? গবেষকরা বলছেন, হরমোন থেরাপির সাথে নতুন ধরনের ঔষধের সংমিশ্রণে প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত কোনো কোনো মহিলার ক্ষেত্রে আরো বেশিদিন বেঁচে থাকা সম্ভব যে ভার্চুয়াল টিউমারটি নিয়ে কেমব্রিজ গবেষকরা কাজ করছিলেন, সেটি স্তনের দুগ্ধ নালী থেকে নেয়া হয়েছিল, ভিআর হেডসেটের মাধ্যমে সেটির বিস্তারিত দেখতে পান বিবিসির সংবাদদাতা। মডেলটিকে ঘুরিয়ে প্রফেসর হ্যানন দেখান যে বেশ কয়েকটি কোষ মূল দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। তিনি বলছেন, '' এখানে দেখতে পাচ্ছেন বেশ কিছু টিউমার সেল মূল নালী থেকে পালিয়ে যাচ্ছে।'' ''এর মানে হয়তো এটা যে, ক্যান্সার কোষগুলো আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে- যা সত্যিই বিপদজনক হয়ে উঠছে। ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্যান্সার কোষটিকে বিশ্লেষণ করার ফলেই এই বিশেষ মুহূর্তটি সহজে আমরা বুঝতে পারছি।'' এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈজ্ঞানিক অধ্যাপক কারেন ভোসডেন ফ্রান্সিস ক্রিক ইন্সটিটিউটে একটি গবেষণাগার পরিচালনা করছেন, যেখানে গবেষণা করা হয় যে, কিছু নির্দিষ্ট জিন কিভাবে ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে এবং তারা ভুল পথে গেলে কি হয়? তিনি বিবিসিকে বলছেন, ''কিভাবে ক্যান্সার কোষগুলো একে অপরের সঙ্গে কাজ করে, বিশেষ করে ভালো কোষের ক্ষেত্রে সেটা বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যদি আমরা নতুন চিকিৎসা উপায় খুঁজে বের করতে চাই। সুতরাং এখন আমরা যে দ্বিমাত্রিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছি, তার চেয়ে এই নতুন আবিষ্কার করা ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তি দ��য়ে ক্যান্সার টিউমার দেখতে পারাটা এ কারণে খুবই সহায়ক একটি উপায় হবে।'' ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্যান্সারের 'ভার্চুয়াল টিউমার' তৈরি করেছেন ক্যামব্রিজের বিজ্ঞানীরা, যেটি ক্যান্সার রোগটি সনাক্ত করার নতুন উপায় বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। +text: তিউনিসিয়ায় যেরকম অকপটে নারীরা তাদের ওপর নিপীড়নের কাহিনী প্রকাশ করতে শুরু করেছেন, তা অভূতপূর্ব। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে অনেক নারী তাদের নিজেদের যৌন নির্যাতন ও হয়রানির কাহিনী প্রকাশ করছেন আরবিতে 'এনা জেডা' হ্যাশট্যাগে, ইংরেজিতে যার মানে হচ্ছে 'মি-টু।' সেখান থেকেই তিউনিসিয়ায় শুরু হয়েছে এক অভূতপূর্ব আন্দোলন। হস্তমৈথুনরত যে পুরুষের ছবি নিয়ে এত হৈচৈ, তিনি একজন সদ্য নির্বাচিত এমপি জোওহেইর মাখলুফ। তবে গাড়িতে বসে হস্তমৈথুনের কথা অস্বীকার করে মিস্টার মাখলুফ বলছেন, তিনি একজন ডায়াবেটিক রোগী, সে সময় তিনি আসলে একটি বোতলে প্রস্রাব করছিলেন। কিন্তু এই কথা মানতে মানতে নারাজ বিক্ষুব্ধ নারীরা। তারা 'এনা জেডা' লেখা টি-শার্ট পরে পার্লামেন্টের বাইরে বিক্ষোভ করে এ ঘটনার বিচার চেয়েছেন। একজন এমপি হিসেবে জোওহেইর মাখলুফ কিছু সুরক্ষা পান। কিন্তু তারপরও এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এমপি জোওহেইর মাখলুফের এই হস্তমৈথুনের ছবিটি তোলেন এক ছাত্রী। তিনি অভিযোগ করেন যে, এই এমপি তাকে হয়রানি করছিলেন। শিশু যৌন নির্যাতন এবং অজাচার 'হ্যাশট্যাগ- এনা জেডা' প্রতিবাদের সূচনা করে আসওয়াত নিসা বা 'নারীদের কন্ঠ' নামে একটি বেসরকারি সংস্থা। তারা ফেসবুকে এই নামে একটি ক্লোজড গ্রুপ খোলে যাতে যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া নারীরা এখানে তাদের অভিজ্ঞতা নিরাপদে বলতে পারেন। এই গ্রুপটির একজন মডারেটর রানিয়া সাইদ বলেন, "শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়ন এবং অজাচারের (ইনসেস্ট) ঘটনা কিন্তু আমরা যতটুকু স্বীকার করতে চাই তার চেয়ে অনেক বেশি ব্যাপক।" "অনেক পরিবারই আসলে এই বিষয়গুলো গোপন করছে। অনেক পরিবার জানেই না কিভাবে এই সমস্যার মোকাবেলা করতে হয়।" এমপির বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিতে তিউনিসিয়া জুড়ে বিক্ষোভ এই ফেসবুক গ্রুপে এখন যোগ দিয়েছে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। গ্রুপে যোগ দেয়ার জন্য আরও অনেকের আবেদন এখনো অনুমোদনের অপেক্ষায়। ধর্ষণ, স্বামী কর্তৃক ধর্ষণ এবং যৌন হয়রানির আরও গাদা গাদা অভিযোগ ���ই গ্রুপে তুলে ধরেছেন নারীরা। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাদের মধ্যে সামরিক বাহিনী, পুলিশ, বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, মিডিয়ার লোকজন থেকে শুরু করে পরিবারের আত্মীয়স্বজন - কেউ বাদ নেই। কেবল যে নারীরাই অভিযোগ করছেন তা নয়, অনেক পুরুষও তাদের অভিযোগ তুলে ধরেছেন এখানে। ফেসবুক গ্রুপে নারীদের এই বিপুল অংশগ্রহণ অবাক করেছে আসওয়াত নিসা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতাদের। "শুরুতে বিশেষ করে নারীরা তাদের চাচা, ভাই, প্রতিবেশি থেকে শুরু করে পাড়ার মোড়ের দোকানিদের ব্যাপারে কত রকমের অভিযোগ যে করেছে", বলছেন রানিয়া সাইদ। 'আমার মা সাহায্য করেনি' আসওয়াত নিসা গ্রুপের মাধ্যমে যোগাযোগ হলো ৩৬ বছরের এক নারীর সঙ্গে, যিনি ১৪ বছর বয়সে নিজের খালুর হাতে যৌন নিপীড়নের শিকার হন। নিজের বাবার হাতে মার খাওয়ার পর তিনি তার খালা-খালুর কাছে চলে গিয়েছিলেন। "হ্যাশট্যাগ এনা জেডা": তিউনিসিয়ার মি-টু আন্দোলন "ব্যাপারটা শুরু হয়েছিল আমাকে মুখে চুমু খাওয়া কিংবা আমার স্তনে হাত দেয়ার মাধ্যমে।" "প্রথমে আমি বুঝতে পারিনি তিনি কী করছেন। কারণ তখনো আমার যৌন চেতনা সেভাবে তৈরি হয়নি। আমার সঙ্গে এ নিয়ে কেউ কথাও বলেনি।" কয়েক সপ্তাহ ধরে এরকমটাই চলছিল। তারপর একরাতে তিনি মেয়েটির ঘরে ঢুকলেন। "তিনি আমার ওপর চেপে বসলেন। আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করলেন। আমি চিৎকার করা শুরু করলাম। তিনি ভয় পেয়ে গেলেন। কারণ আমার খালা পাশের ঘরেই ঘুমাচ্ছিলেন।" এই নারী পরে তার কয়েকজন আত্মীয়-স্বজনকে ব্যাপারটা জানিয়েছিলেন, কিন্তু তারা সবাই ব্যাপারটাকে এই বলে উড়িয়ে দিলেন যে এটা তার প্রতি খালুর বেশি আদর স্নেহের লক্ষণ। "আমার নিজের মা আমাকে বললেন, আমার জীবনেও আছে এমন ঘটনা। আমার মনে হয় না খুব খারাপ কিছু তোমার বেলায় ঘটেছে।" ভয়ে তিনি এই ঘটনা নিয়ে কারও কাছে আর অভিযোগ করেন নি। "যদি আমি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতাম, তাহলে হয়তো আমাদের পুরো পারিবারিক সম্পর্ক নষ্ট করে দিতাম, আমি সেটার দায়ভার নিতে চাইনি।" বৈরি সমাজ-সংস্কৃতির বিরুদ্ধে লড়াই নারীদের সুরক্ষায় আইন তৈরির জন্য নারী অধিকার কর্মীদের বিক্ষোভ ২০১৭ সালে তিউনিসিয়ার পার্লামেন্টে এক যুগান্তকারী আইন তৈরি করা হয়, যার উদ্দেশ্য নারীকে সহিংসতা থেকে রক্ষা করা। তখন পর্যবেক্ষকরা বলেছিলেন, পুরো অঞ্চলে তিউনিসিয়ার এই আইনটি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি প্রগতিশীল একটি আই��। কারণ এতে একবার যদি কোন নারী কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন, পরে তিনি অভিযোগের ব্যাপারে মত বদলালেও তদন্ত চলতেই থাকে। তবে ফাদুয়া ব্রাহেন নামের একজন আইনজীবী বলছেন, আইনটি এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি অন্তর্ববর্তীকালীন পর্যায়ে আছে। তার মতে, তিউনিসিয়ায় যৌন হয়রানির কোন অভিযোগ আদালত পর্যন্ত আসার আগে বৃহত্তর সমাজের দিক থেকে এবং সাংস্কৃতিভাবে যে প্রতিকুল অবস্থার মুখে পড়তে হয়, তা এই আইনকে একটা পরিহাসে পরিণত করেছে। তবে হ্যাশট্যাগ-এনা জেডা যেটা করেছে, তা হলো যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের ঘটনা অকপটে বলার একটা সুযোগ করে দিয়েছে, যে ধরণের নির্যাতনের কথা তিউনিসিয়ায় স্বীকারই করা হয়না। তিউনিসিয়ায় একটি স্কুলের সামনে গাড়িতে বসে এক পুরুষের হস্তমৈথুনের ছবি প্রকাশ পাবার পর সেদেশের নারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। +text: এমন কয়েকটি বিষয় রয়েছে, যা হয়তো অনেকেই শোনেননি, ফলে কখনো গুরুত্বও দেননি, কিন্তু তার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে হৃদরোগের কিন্তু এই রোগের ঝুঁকি বাড়াতে এমন আরো কয়েকটি বিষয় রয়েছে, যা হয়তো অনেকেই শোনেননি ফলে কখনো গুরুত্বও দেননি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, বর্তমান বিশ্বে মানুষজনের মৃত্যুর অন্যতম শীর্ষ কারণ হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া। এই রোগের জন্য দায়ী কিছু লুকিয়ে থাকা কারণ এখানে উল্লেখ করা হচ্ছে: ১. দাঁতের ফাঁকাগুলো পরিষ্কার না রাখা আমাদের হৃদয় এবং দাঁতের মধ্যে সম্পর্ক অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ আমরা যতটা ভাবি, তার চেয়ে আমাদের হৃদয় এবং দাঁতের মধ্যে সম্পর্ক অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ। বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, মুখের স্বাস্থ্যের প্রতি কম যত্নবান লোকজনের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি রয়েছে। রক্তপাত বা ক্ষত রয়েছে এমন মাড়ি থেকে মুখের ব্যাকটেরিয়া রক্তে প্রবেশ করতে পারে। সেগুলো রক্তনালী বা ধমনিতে চর্বির স্তর তৈরিতে সহায়তা করে। আরো পড়ুন: স্বাস্থ্য ভালো রাখার কয়েকটি সহজ উপায় সকালে নাস্তা করাটা কি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো? মানসিক রোগীকে কীভাবে সাহায্য করতে পারেন এগুলো লিভারে গিয়ে উচ্চ মানের প্রোটিন তৈরিতে সহায়তা করতে পারে, যা রক্তের নালীতে স্তর বা বাধা তৈরিতে সহায়তা করে। ফলে এরকম বাধা তৈরি হলে তা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া বা স্ট্রোক পর্যন্ত গড়াতে পারে। কিন্তু সমাধান? ���িয়মিত ভাবে দাঁত পরিষ্কার করা, বিশেষ করে ফ্লস করা এবং নিয়মিতভাবে দাঁতের ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করা। ২. বসের প্রতি বিদ্বেষ আপনার বসের প্রতি ঘৃণা বা বিদ্বেষ আপনার হৃদরোগের কারণ হতে পারে এটা আসলে কোন রসিকতা নয়- আপনার বসের প্রতি ঘৃণা বা বিদ্বেষ আপনার হৃদরোগের কারণ হতে পারে। ১০ বছর ধরে চালানো সুইডিশ একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, কর্মক্ষেত্রের শীর্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক কর্মীদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে ওই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: ভারতের দাবি 'নিহত অসংখ্য', পাকিস্তানের নাকচ ভারত-পাকিস্তানের সামরিক শক্তির পার্থক্য কতটা? 'ওরা যে নাটক করছে সেটা না করলেও আমি অবাক হতাম না' বিমান ছিনতাই চেষ্টা নিয়ে কর্তৃপক্ষের যত বক্তব্য ''কর্মক্ষেত্রে বেশ কিছু চাপের কারণে হৃদরোগের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যেতে পারে'' বলছেন ভিজয় কুমার, যুক্তরাষ্ট্রের হেলথ হার্ট ইন্সটিটিউটের একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ। এর সঙ্গে যদি ঘুমের স্বল্পতা আর খারাপ খাদ্যাভ্যাস যোগ হয়, তাহলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। ৩. দুঃখজনক ঘটনা পরিবারের কোন সদস্যের মৃত্যুর মতো হঠাৎ করে পাওয়া কোন দুঃখজনক ঘটনা সত্যিকার অর্থেই আপনার হৃদয় ভেঙ্গে দিতে পারে পরিবারের কোন সদস্যের মৃত্যুর মতো হঠাৎ করে পাওয়া কোন দুঃখজনক ঘটনা সত্যিকার অর্থেই আপনার হৃদয় ভেঙ্গে দিতে পারে। আমেরিকান মেনোপজ সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী, যে নারীরা তাদের জীবনে কোন বড় শোকাতুর ঘটনার মুখোমুখি হননি,তাদের তুলনায় যারা এরকম তিনটি বা তার বেশি দুঃখজনক ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন, তাদের রক্তের নালীগুলো কর্মক্ষমতা অনেক কম। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ জ্যাকি ইওবানি বলছেন, অতিরিক্ত মানসিক চাপে কারণে লক্ষণীয় মাত্রায় অ্যাড্রিনাল থেকে নিঃসৃত হরমোনের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। যা হৃৎপিণ্ডে কম্পন অনেক বাড়িয়ে তোলে এবং রক্তের চাপ বেড়ে যায়। ৪. একাকীত্ব বোধ করা হৃদরোগের অন্যতম কারণ একাকীত্ব আরেকটি ব্রিটিশ জার্নাল বলছে যে, সামাজিকভাবে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের যেখানে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৩২ শতাংশ, সেখানে যারা সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন, তাদের সম্ভাবনা রয়েছে ২৯ শতাংশ। এর হয়তো একটি কারণ হতে পারে একাকীত্বের কারণ�� মানসিক চাপ বেড়ে যায় এবং একাকী লোকজনকে কেউ আবেগ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে না। ২০১৪ সালে প্রকাশিত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় আট বছর ধরে সাত লাখ মানুষের ওপর গবেষণা করেছে। তারা দেখতে পেয়েছে যে নারীরা একা থাকেন,তাদের তুলনায় যারা সঙ্গীর সঙ্গে থাকেন, তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ২৮ শতাংশ কম। ৫. বিষণ্ণতা যুক্তরাষ্ট্রে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া রোগীদের ৩৩ শতাংশই বিষণ্ণতায় ভুগেছেন আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া রোগীদের ৩৩ শতাংশই বিষণ্ণতায় ভুগেছেন। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করেন যে, মানসিক সমস্যা আছে, এমন রোগীরা তাদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে অতিরিক্ত জটিলতায় ভোগেন। নিউইয়র্কের জন এইচ টিইচ সেন্টার ফর উইমেন হেলথের চিকিৎসা পরিচালক নিয়েকা গোল্ডবার্গ বলছেন, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া বা মদ্যপান নিয়ন্ত্রিত করার মতো অভ্যাস বিষণ্ণতা মোকাবেলায় ভালো কাজ দিয়েছে। ''খারাপ পরিস্থিতিতে থাকা মানুষজন এমন সব বিষয়ের দ্বারস্থ হয়, যা তাদের খানিকটা স্বস্তি দেয়। তখন তারা ভাবে না এটা স্বাস্থ্যকর নাকি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।'' তিনি ব্যাখ্যা করেন। ৬. রজোবন্ধ (ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া) যখন বয়সের কারণে নারীদের ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায়, সেসব সময় নারীদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায় যখন বয়সের কারণে নারীদের ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায়, সেসব সময় নারীদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। এর কারণ হয়তো হতে পারে যে, এ সময় তাদের শরীরে প্রাকৃতিক ইস্ট্রজেন হরমোন নিঃসরণ কমে যা এটা বিশ্বাস করা হয় যে, ধমনির অভ্যন্তরীণ দেয়ালের জন্য ইস্ট্রজেন ইতিবাচকভাবে কাজ করে, যা রক্তনালীগুলোকে নমনীয় করে রাখে। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ জ্যাকি ইওবানি আরো যোগ করেন যে, বয়সের কারণে রক্তনালীগুলোর নমনীয়তা চলে যায়, যা ধমনির ভেতর চাপ বাড়িয়ে দেয়। তবে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং নিয়মিত শরীর চর্চা এসব ঠেকাতে অনেকটাই সহায়তা করতে পারে। স্বাস্থ্য: আপনি কি ডায়াবেটিক রোগী? সবাই জানেন তামাক, স্থূলতা বা ব্যায়ামের অভাবের কারণে হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় +text: বরিস জনসনের পদক্ষেপের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপত��দের সভাপতি লেডি হেইল এ নিয়ে মঙ্গলবার এক ঐতিহাসিক রায়ে বলেছেন, ওয়েস্টমিনিস্টার সংসদের দুটি কক্ষের অধিবেশন স্থগিত করার আদেশটি তাই বাতিল বলে বিবেচিত হবে। সুপ্রিম কোর্টের ১১ জন বিচারকের একটি বিশেষ প্যানেল সর্বসম্মতভাবে এই রায় দেন। চলতি মাসের গোড়ার দিকে মি. জনসন পাঁচ সপ্তাহের জন্য সংসদ অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন। তার সরকারের নতুন নীতিমালা সংসদে রানির ভাষণের মাধ্যমে তুলে ধরার জন্য এই সময়টুকু প্রয়োজন বলে সে সময় তিনি যুক্তি দেখান। এই রায় দেয়ার সময় আদালত যেসব আইনগত দিক বিবেচনা করেছে তার প্রধান দিকগুলো এখানে তুলে ধরা হলো: রানিকে পরামর্শ দেয়ার বৈধতা পার্লামেন্ট স্থগিতের প্রশ্নে রানিকে যে পরামর্শ দেয়া দেয়া হয়েছিল তার বৈধতা বিচার করার অধিকার আদালতের রয়েছে কি না, তাই ছিল এই মামলার মূল বিবেচ্য বিষয়। আদালত মনে করছে, এই প্রশ্নে মীমাংসা করার অধিকার তার রয়েছে। রায় ঘোষণা করছেন ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সভাপতি লেডি হেইল। সম্পর্কিত খবর: সুপ্রিম কোর্টের রায়: 'পার্লামেন্ট স্থগিত অবৈধ' লেডি হেইল তার রায় উল্লেখ করছেন, কয়েক শতাব্দী ধরে সরকারের কাজের আইনগত বৈধতা বিচার করার এখতিয়ার আদালতের রয়েছে। ১৬১১ সালে তৎকালীন সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী রাজাও আইনের বাইরে যেতে পারেন না বলে আদালত মনে করে। সংসদীয় গণতন্ত্রের কার্যকারিতা সুপ্রিম কোর্ট তার পর্যবেক্ষণে বলছে, আগামী ৩১শে অক্টোবর ব্রেক্সিটের মধ্য দিয়ে আমূল পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে, তার আগে দীর্ঘ সময় ধরে সংসদ স্থগিত রাখা হয়েছে যার প্রভাব পড়েছে সংসদীয় গণতন্ত্রের ওপর। এই বিষয়টিও আদালত বিবেচনা করেছে। আদালত তার রায়ে বলছে, এসব পরিবর্তন নিয়ে পার্লামেন্ট, বিশেষভাবে জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে হাউস অফ কমন্স-এর কথা বলা অধিকার রয়েছে। সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারার ওপর তাই সরকারি সিদ্ধান্ত ছিল চরম। স্থগিতাদেশের পক্ষে যুক্তিহীনতা আদালত রায়ে উল্লেখ করেছে, পার্লামেন্টের অধিবেশনের স্থগিতাদেশের পেছনে যুক্তিগুলো সরকারপক্ষ তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। রানির ভাষণের প্রস্তুতির জন্য যেখানে নিয়ম-মাফিক চার থেকে ছয় দিনের প্রয়োজন হয়, সেখানে পাঁচ সপ্তাহ আগে কেন সংসদ স্থগিত করার প্রয়োজন হলো তার কোন ব্যাখ্যা সরকারের কাছে ছিল না। ওয়েস্টমিনস্টার, ব্রিটেনের সংসদ। পাশাপ���শি, সংসদ স্থগিত করা এবং অধিবেশনের ছুটির বিষয়টিও নিয়েও কোন ব্যাখ্যা নেই বলে লেডি হেইল রায়ে উল্লেখ করেন। সে কারণেই আদালত মনে করছে, রানিকে সংসদ স্থগিত করার সরকারি পরামর্শটি ছিল বেআইনি যার ফলে সংসদ তার ওপর ন্যস্ত সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের সুযোগ পায়নি। সংসদের বাইরে থেকে চাপানো সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সভাপতি লেডি হেইল তার রায়ের এক জায়গায় বলছেন, সরকার যুক্তি দেখাচ্ছে যে সংসদ স্থগিত করার সিদ্ধান্তটি সংসদের নিজস্ব ব্যাপার এবং ১৬৮৮ সালের নাগরিক অধিকারের সনদ অনুযায়ী এ নিয়ে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারে না। কিন্তু লেডি হেইল বলেন, অধিবেশন স্থগিত করার সিদ্ধান্তটি বাইরে থেকে সংসদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। স্থগিত করার সিদ্ধান্তটি সংসদের কার্যক্রমের অংশ ছিল না। সংসদ সদস্যরা এই প্রশ্নে কোন ধরনের আলোচনা বা ভোটদানের সুযোগ পাননি বলে তিনি রায়ের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেন। আদালতের বাইরে মি. জনসনের একজন বিরোধী। বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: 'টয়লেট নিয়ে' বিড়ম্বনায় নরেন্দ্র মোদী ও বিল গেটস বগুড়ায় বিপুল পরিমাণ ছেঁড়া টাকা উদ্ধার মাংসপেশিতে টান পড়লে কী করবেন এর পর কী ঘটতে পারে? ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট বলছে, পরবর্তী পদক্ষেপের সিদ্ধান্তটি সংসদ এবং বিশেষভাবে স্পিকারকেই নিতে হবে। অন্য কোন বাধা না থাকলে অতি দ্রুত পার্লামেন্টের দুটি কক্ষের অধিবেশন চালু করা যায়। লেডি হেইল তার রায়ের পক্ষে যুক্তি দেখান এই বলে যেহেতু স্থগিতাদেশটি ছিল অবৈধ, তাই সংসদের অধিবেশন স্থগিত হয়নি বলে বিবেচিত হবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক প্যানেলের ১১ জন সদস্যই এই প্রশ্নে একমত বলে তিনি রায়ে উল্লেখ করেন। ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, সংসদের অধিবেশন স্থগিত করার প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন রানিকে যে পরামর্শ দিয়েছিলেন তা ছিল অবৈধ। +text: মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন বলছে, মে মাসের প্রথম নয় দিনে ৪৪জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে এবং ৪ জন শিশু ধর্ষণের চেষ্টার শিকার হয়েছে। বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদ মোবারক জানান এই ঘটনায় গতকাল শিশুটির বাবা থানায় মামলা করেছে। এখন পুলিশ অভিযুক্তকে ধরার জন্য অভিযান চালাচ্ছেন। এদিকে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়াতে সিলেটে মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাংলাদেশে চলতি মে ��াসের প্রথম ৯ দিনে ধর্ষণ এবং ধর্ষণের চেষ্টার শিকার হয়েছেন ৪৮ জন শিশু। দেশের বিভিন্ন স্থানে এই ধর্ষণের ঘটনা হয়েছে। কিছু স্থানে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে আবার অনেকে অধরা রয়ে গেছে এখনো। শিশুদের অধিকার নিয়ে যারা কাজ করে তারা বলছেন এই সংখ্যা উদ্বেগজনক। আরো পড়ুন: যৌন নির্যাতন: শিশুদের কীভাবে সচেতন করবেন 'উত্যক্তকারী, প্রতিবেশীদের দ্বারা ধর্ষণের শিকার ২১২ শিশু' আইনের দুর্বলতায় পার পেয়ে যাচ্ছে ধর্ষণের আসামীরা স্বামীর হাতে ধর্ষণের খবরে কেন আপত্তি? বাংলাদেশে শিশু নির্যাতন ধর্ষণ বাড়ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন বলছে, মে মাসের প্রথম নয় দিনে ৪৪জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে এবং ৪ জন শিশু ধর্ষণের চেষ্টার শিকার হয়েছে। সংস্থাটির একজন কর্মকর্তা শাহানা হুদা বলছিলেন এই সংখ্যাটা সাংঘাতিক রকমের উদ্বেগের ব্যাপার। " এটা সাংঘাতিক রকম উদ্বেগজনক ব্যাপার। এই কারণেই সবার চোখে পড়ছে যে কেন সংখ্যাটা এত বেড়ে গেল। গত দুই মাস ধরে আমরা লক্ষ করছি অস্বাভাবিকভাবে শিশু ধর্ষণের সংখ্যা বেড়ে গেছে।'' ''আরেকটা জিনিস আমার কাছে অদ্ভুত লেগেছে যে গত বছরের আমাদের রিপোর্টেও আছে ৬ বছর থেকে ১৩/১৪ বছরের বাচ্চারা বেশি ধর্ষণের শিকার হচ্ছে"। ‌এই সংস্থাটি বলছে ২০১৮ সালে ৩৫৬জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে, যার মধ্যে মারা গেছে ২২জন। ২০১৭ সালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৭২ জন শিশু। ২০১৬ ও ২০১৫ সালে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৩০৪ এবং ২৯০জন শিশু। শিশু ধর্ষণের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এর সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু বিষয়টা সংখ্যার হিসেবের চাইতেও বিষয়টি ভয়াবহ এক পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: যে ৫২টি পণ্য সরিয়ে নিতে বলেছে হাইকোর্ট তুষারপাতে আটকে অনাহারে মারা গেল ৩০০ ইয়াক 'আল্লাহ আমাদের বাঁচাতে জেলেদের পাঠিয়েছিল' আইপিএল ২০১৯: কে এগিয়ে? মুম্বাই নাকি চেন্নাই শিশুরা এমন প্রসঙ্গ বোঝার ক্ষমতা রাখে না। কিন্তু তবুও তাকে জানাতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের শিক্ষক খন্দকার ফারজানা রহমান বলছিলেন, অনেক কারণের মধ্যে একটি হল পিডোফাইল বা শিশুদের প্রতি যৌন আগ্রহ। " আমাদের সমাজের যে একটা পরিবর্তন এবং সংস্কৃতি, প্রযুক্তি সব কিছু মিলিয়ে আমরা খানিকটা ডিসটরটেড হয়ে যাচ্ছি। পিডোফাইল সম্পর্কে এখনো অনেক মানুষ সচেতন না। এর একটা বড় কারণ আমরা কখনো আউট অব দ্যা বক্স চিন্তা করি না যে, একটা ৪/৫ বছরের শিশুকে পরিবার,আত্মীয় বা বাইরের কেউ রেপ করবে।'' ''কিন্তু বিষয়টা এখন আর সেখানে সীমাবদ্ধ নেই। এখন মানুষের মানসিক অবস্থা এতটাই জটিল এবং বোধগম্য না, যার কারণে পিডোফাইল বা শিশুদের প্রতি যৌন আগ্রহের মতো বিষয়গুলো মানুষের সামনে আসছে"। তবে শিশুদের পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করে শাহানা হুদা বলছিলেন, বাংলাদেশের আইনে- ধর্ষণের কঠিন শাস্তির বিধান থাকলেও দ্রুত সেটার বাস্তবায়ন বা দৃষ্টান্ত স্থাপন করার মত কোন উদাহরণ নেই। তাই অনেকেই এই ধরণের অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে। এছাড়া শিশুদের অধিকার নিয়ে যারা কাজ করেন তারা বলছেন, শিশু ধর্ষণের ক্ষেত্রে মাদক এবং পর্নোগ্রার্ফি অনেকগুলো কারণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণ। বাংলাদেশের হবিগঞ্জের বানিয়াচং এলাকায় একটি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে গত ১০ই মে, শুক্রবার। +text: পার্বত্য চট্টগ্রামে বহু বছর ধরে রয়েছে পাহাড়ি-বাঙালিদের বিবাদ স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, নুরুল ইসলাম নয়ন নামে এক যুবলীগ কর্মীর লাশ বৃহস্পতিবার রাতে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা-লংগদু সড়কের পাশে পাওয়া যাবার পর উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। লাশ নিয়ে শুক্রবার সকালে স্থানীয় বাঙালিরা মিছিল বের করলে আক্রমণের সূত্রপাত হয়। লংগদু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোমেনুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে জানান, মিছিল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে লংগদু উপজেলার তিনটিলায় ১০-১২টি এবং পার্শ্ববর্তী মানিকজুরছড়ায় তিন-চারটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। যেসব বাড়িতে আগুন দেয়া হয় তাদের মধ্যে তিনটিলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কলিন মিত্র চাকমার বাড়ি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির স্থানীয় অফিসও রয়েছে। তবে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) শুক্রবার এক বিবৃতিতে ঘটনাকে 'সংঘবদ্ধ সাম্প্রদায়িক হামলা' বলে আখ্যায়িত করে তার নিন্দা করেছে। পিসিজেএসএস পুলিশের দেয়া ক্ষয়ক্ষতির হিসেবের সাথে দ্বিমত পোষণ করে বলে, লংগদু উপজেলার তিনটিলা এবং পার্শ্ববর্তী মানিকজুরছড়ায় ''জুম্মদের প্রায় ২৫০টি ঘরবাড়ি ও দোকানপাট সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়েছে''। জনসংহতি সমিতি আক্রমণের জন্য স্থানীয় 'সেটলার' বাঙালিদের দায়ী ক'রে বলে, তারা ���েনা বাহিনী এবং পুলিশের 'ছত্রছায়ায়' আক্রমণ চালিয়েছে। পিসিজেএসএস বলছে, লাশ নিয়ে ''জঙ্গি মিছিল'' বের করার খবর জানাজানি হলে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ লংগদু থানা এবং সেনা জোনের কর্মকর্তাদের কাছে তাদের আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন। তবে মিছিল শান্তিপূর্ণ হবে বলে তাদের আশ্বস্ত করা হয় বলে পিসিজেএসএসের বিবৃতিতে বলা হয়। মিছিলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য সংগঠনের কর্মীরা অংশ নেয় বলে অভিযোগ করে জন সংহতি সমিতি সেনা-পুলিশসহ ''ঘটনার সাথে জড়িত'' সকলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে। বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে স্থানীয় একজন আওয়ামী যুবলীগের কর্মীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার পর পাহাড়িদের ঘরবাড়ি এবং দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। +text: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনা সমর্থকদের উম্মাদনা। (ফাইল ছবি) বেলজিয়ামের বিপক্ষে ম্যাচের আগেও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ব্রাজিলের পতাকা উড়তে দেখা গেলেও, কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামের কাছে হারের পর হাতে গোনা দু'একটি জায়গা বাদে খুঁজেই পাওয়া গেলো না সেসব পতাকা। রাস্তাঘাটে জার্সি পরা মানুষের সংখ্যাও হঠাৎই যেন কমে গেছে। ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র ছাত্রী বলছিলেন ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার মত বড় দল বাদ হয়ে যাওয়ায় তাদের বিশ্বকাপ উন্মাদনায় ভাটা পড়েছে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উৎস বলছিলেন আর্জেন্টিনা হারার পর তার আর্জেন্টিনা সমর্থক বন্ধুবান্ধব বিশ্বকাপের খেলা দেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল। তেমনি ব্রাজিলের হারের পর তার ব্রাজিল সমর্থক বন্ধুদের অনেকে আর বিশ্বকাপের খেলা দেখবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের তামিসা বলেন আর্জেন্টিনার বিদায়ের পর বড় দল হিসেবে তিনি ব্রাজিল সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু ব্রাজিলও বাদ পড়ে যাওয়ায় বিশ্বকাপ দেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন তিনিও। বড় দলগুলো বাদ পড়ায় বিশ্বকাপ নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে তৈরী হওয়া অনীহার কারণে বিশ্বকাপের বাণিজ্যিক সম্প্রচার ব্যাবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা উন্মাদনা: যেভাবে শুরু মাছরাঙা টিভির সম্প্রচার বিভাগের প্রধান এমএম সায়েম মনে করেন বড় দল বাদ হয়ে যাওয়ায় দর্শকসংখ্যা পাশাপাশি ব্যাবসায়িক হিসেবেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে তাদের বিশ্বকাপ সম্প্রচারে। "ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি, স্পেন বা পর্তুগালের মত বড় দলগুলো সেমিফাইনাল পর্যন্ত উঠবে এমনটাই চাওয়া ছিল আমাদের, যেন খেলা দেখার জন্য দর্শকের চাপ থাকে। বাজারজাতকরণের বিশ্লেষণটাও সেসব বিষয় মাথায় রেখেই করা হয়েছিল", বলেন মি. সায়েম। মি. সায়েম মনে করেন বড় দলগুলো আগেভাগে বাদ পড়ায় বিজ্ঞাপণ থেকে আসা মুনাফা ও দর্শকের উপস্থিতি, এই দুই বিষয়ের ওপরই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তবে পছন্দের দল বাদ হয়ে যাওয়ায় সবাই কিন্তু বিশ্বকাপের ম্যাচ না দেখার সিদ্ধান্ত নেননি। বড় দল বাদ হয়ে যাওয়ায় বিশ্বকাপ কিছুটা জৌলুস হারালেও ভিন্ন আমেজে খেলা উপভোগ করতে চান অনেক দর্শক। যেমন ব্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জারিফ মনে করেন অধিকাংশ মানুষের পছন্দের দলগুলো না থাকায় পরবর্তী ম্যাচগুলোতে সমর্থকদের মধ্যে হওয়া দ্বন্দ্ব কমে যাবে। সব দলের সমর্থকরা একসাথে বিশ্বকাপ উপভোগ করতে পারবেন। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের জন্য বিশ্বকাপের উন্মাদনা শেষ হয়ে গেলেও, ফুটবল ভালোবাসেন এমন অনেক মানুষই এখনও মুখিয়ে রয়েছেন বিশ্বকাপের শেষ কয়েকটি ম্যাচের জন্য। জার্মানি, আর্জেন্টিনা, পর্তুগালের পর বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ব্রাজিল ছিটকে যাওয়ার পর বাংলাদেশের মানুষের বিশ্বকাপ সংক্রান্ত উত্তেজনা-উন্মাদনা যেন হঠাৎই থিতিয়ে পড়েছে। +text: নাথু লা সীমান্তে মুখোমুখি ভারত আর চীনের সীমান্ত রক্ষী ভারত ও ভুটানের 'বিশেষ সম্পর্ক' প্রায় ৭০ বছরের পুরনো, কিন্তু সেই সম্পর্কে চীনের ছায়া পড়ছে বলে সম্প্রতি ভারতেই অনেক পর্যবেক্ষক ও বিশ্লেষক মনে করছেন। চীনের সঙ্গে ভুটানের কোনও কূটনৈতিক সংযোগ না-থাকলেও ইদানীং বেজিং-এর কর্তৃপক্ষ যে নানাভাবে থিম্পুর সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে চাইছে, সেই ইঙ্গিতও স্পষ্ট। এই পটভূমিতে হিমালয়ের পার্বত্য দেশ ভুটানকে ঘিরে দুশ্চিন্তা বাড়ছে ভারতেও। চীন-ভারত সামরিক সংঘাতকে কেন্দ্র করে গত মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ যখন পার্লামেন্টে বিবৃতি দেন, তখন বিরোধীদের সমালোচনা ছিল বর্তমান সরকারের আমলে সব প্রতিবেশীর সঙ্গেই ভারতের সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে। জবাবে তিনি যে দুই প্রতিবেশীর সঙ্গে ���ারতের বন্ধুত্বের দৃষ্টান্ত দেন, তার একটি ছিল বাংলাদেশ আর অপরটি ভুটান। ভুটানকে ভারতের প্রিয়তম বন্ধু বলে বর্ণনা করেন তিনি। তিন বছর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার প্রথম বিদেশ সফরে যে এই ভুটানেই গিয়েছিলেন, সে কথাও মনে করিয়ে দেন। দু'দেশের মধ্যেকার 'ফ্রেন্ডশিপ ট্রিটি' অনুযায়ী ভুটানের প্রতিরক্ষা, বিদেশনীতি ও বাণিজ্যে ভারতের প্রভাব দ্বিপাক্ষিকভাবেই স্বীকৃত। এবং এই মুহূর্তে ডোকলাম উপত্যকায় যে ভারতীয় সেনারা চীনা ফৌজের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আছে, তারাও দাঁড়িয়ে আছে ভুটানের মাটিতেই। ভারত-চীন সীমান্তে কঠোর নজরদারী কিন্তু তা সত্ত্বেও ভারতের বর্তমান সরকার ভুটানের সঙ্গে ঐতিহাসিক মৈত্রীর সম্পর্ককে দুর্বল করে ফেলেছে বলেই মনে করেন সিনিয়র কংগ্রেস নেতা, সাবেক এমপি ও কূটনীতিক মণিশঙ্কর আইয়ার। বিবিসি বাংলাকে মি. আইয়ার বলছিলেন, "একটি প্রাণোচ্ছল গণতন্ত্র হিসেবে ভুটানের বিবর্তন হয়েছে খুব দ্রুত। ফলে তাকে আর আগের মতো শুধু একটি রাজতন্ত্র-শাসিত দেশ হিসেবে দেখলে চলবে না, সেখানেও যে বিবিধ রাজনৈতিক মতামত জন্ম নিচ্ছে সেটাকেও স্বীকৃতি দিতে হবে।" "বন্ধু হিসেবে ভুটান যাতে দূরে সরে না-যায় সে জন্য আমাদের কূটনীতিকে হতে হবে বহুমাত্রিক। আর আমাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে চাপিয়ে দেওয়া চলবে না মোটেই, কারণ ভুটানেও অনেকেই সেটা পছন্দ করেন না।" ভুটানের সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্ব নিয়ে যে কোনও প্রশ্ন উঠতে পারে, বছরকয়েক আগেও তা ভাবাই যেত না। কিন্তু এখন যাচ্ছে। আর তার মূলে আছে ভুটানের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করার জন্য চীনের মরিয়া প্রয়াস। ভারতের খ্যাতনামা স্ট্র্যাটেজিক অ্যানালিস্ট রাহুল বেদীর কথায়, "আমি মনে করি ডোকলাম সঙ্কট থেকে একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ জিনিস স্পষ্ট হয়ে যাবে, সেটা হল ভুটান কি ভারতের সঙ্গে তাদের পরীক্ষিত সম্পর্কই টিকিয়ে রাখবে, না কি চীনের সঙ্গে আলাদা একটি সম্পর্ক গড়ে তুলবে। সম্ভবত এই মুহূর্তে ভুটান নিজেও এর উত্তর জানে না।" "তবে চীন এ ব্যাপারে প্রায় নাছোড়বান্দা, ডোকলাম সঙ্কটের ঠিক আগে ভারতে চীনা রাষ্ট্রদূতের স্ত্রী পর্যন্ত থিম্পু গিয়ে ভুটানের রাজমাতার সঙ্গে দেখা করে এসেছেন, চীনারা গত কুড়ি বছর ধরে দিল্লিতে ভুটানের দূতাবাসে গিয়ে তাদের সঙ্গে দেখা করে আসছেন," জানাচ্ছেন মি. বেদী। দিল্লিতে চীনা দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ তবে শেষ পর্যন্ত পছন্দটা যদি হয় চীন আর ভারতের মধ্যে, তাহলে ভুটানের রায় ভারতের দিকেই ঝুঁকবে বলে মনে করেন মণিশঙ্কর আইয়ার। তিনি বলছেন, "দালাই লামার নির্বাসনের পর থেকেই ভুটানে একটা আশঙ্কা আছে, চীনারা তিব্বতে বৌদ্ধ সংস্কৃতির যে হাল করেছে একই জিনিস তাদের সঙ্গেও করার চেষ্টা করতে পারে।" "সে জন্যই উত্তরের চীনের তুলনায় দক্ষিণের ভারতের সঙ্গেই তারা মানসিকভাবে বেশি একাত্ম ও নিরাপদ বোধ করে।" "কিন্তু এটাও ঠিক, ভুটান আমাদের স্বার্থের প্রতি এতদিন যে সংবেদনশীলতা দেখিয়েছে ভারতকেও তাদের প্রতি তার চেয়েও অনেক বেশি দেখাতে হবে," অভিমত মি. আইয়ারের। ভারত সরকার ভুটানকে শুধু তাদের প্রিয়তম বন্ধু বলেই মনে করে না - স্ট্র্যাটেজিক দৃষ্টিতেও ভুটানের গুরুত্ব যে অপরিসীম স্বীকার করে সেটাও। সত্তর বছরের এই পুরনো বন্ধুকে নিয়ে অন্যদের টানাটানি তারা এখন কীভাবে সামলায় - সেটাই হবে দেখার বিষয়। ভারত, ভুটান ও চীনের সীমানা যেখানে মিশেছে, সেই ডোকলাম উপত্যকায় অব্যাহত সামরিক উত্তেজনার মধ্যেই দিল্লি ও থিম্পুর কর্তৃপক্ষের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক কোনদিকে গড়াচ্ছে - তা নিয়ে ভারতের মধ্যেই নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। +text: সমুদ্রের কচ্ছপ বালিতে ডিম পাড়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন, সাগরের তাপমাত্রা যত বাড়ছে, পুরুষ কচ্ছপের জন্ম তত কমে যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রীফের উত্তরাঞ্চল কচ্ছপের প্রজননের প্রধান একটি জায়গা। সেখানে দুই লক্ষ কচ্ছপের ওপর এক গবেষণার পর বিজ্ঞানীরা বলছেন, ডিম ফুটে প্রধানত নারী কচ্ছপ বেরুচ্ছে। বিজ্ঞানীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে নারী-পুরুষের সংখ্যার ভারসাম্যতার অভাবে কচ্ছপের পক্ষে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। বিজ্ঞানীরা এখন উপায় খুঁজছেন কীভাবে ফোটার আগে ডিমগুলোর জন্য শীতল পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়। কুইন্সল্যান্ডে পরিবেশ দপ্তরের বিজ্ঞানী ড কলিন লিম্পাস বলছেন, ডিম ফোটার আগের দিনগুলোতে কৃত্রিম বৃষ্টি তৈরি করে বালি ঠাণ্ডা রাখার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে যাতে পুরুষ-নারী কচ্ছপের ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব হয়। এছাড়া, সাগরের বিচের যে জায়গাগুলোকে কচ্ছপ ডিম পাড়ে, সেখানে তাঁবু খাটিয়ে বালি ঠাণ্ডা রাখার কথাও ভাবা হচ্ছে। 'গ্রিন সি' কচ্ছপের লিঙ্গ নির্ভর করে ডিম ফোটার আগে সাগর তীরের বালি ও সাগরের পানির তাপমাত্রার ওপর। +text: গত বছরের অক্টোবরে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসা হয়েছিল (ফাইল ফটো) শুক্রবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে দেখতে যান তার বোন সেলিমা ইসলামসহ কয়েকজন আত্মীয়। এরপর তারা বলছেন, খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ এবং তাকে অবিলম্বে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো উচিত। বিবিসি বাংলার পুলক গুপ্তকে সেলিমা ইসলাম বলেন, জামিন পেলে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে খালেদা জিয়া রাজী আছেন । বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: খালেদা জিয়া: রাজনৈতিক যত সফলতা এবং ভুল খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য সম্পর্কে চিকিৎসকরা যা বলছেন খালেদা জিয়ার মাথায় আরো যেসব মামলা ঝুলছে 'খালেদা জিয়ার রোগগুলো খারাপ আকার ধারণ করছে' প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় খালেদা জিয়া 'এখন উঠে বসতে পর্যন্ত পারেন না' সেলিমা ইসলামের দাবি খালেদা জিয়া এখন উঠে বসতে পর্যন্ত পারেন না। "কারও সাহায্য ছাড়া বসতে পারেনা। তার হাত বেঁকে গেছে। কথা বলতেও তার কষ্ট হচ্ছে। ওজন কমে গেছে। সব কিছু মিলিয়ে তার পঙ্গু হওয়ার মতো অবস্থা হয়ে গেছে"। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেশ কিছুদিন ধরেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সম্প্রতি তার আত্মীয় স্বজনের বাইরে তার দলীয় সংসদ সদস্যরাও সেখানে তার সঙ্গে সাক্ষাত করেছিলেন। তখন তারাও খালেদা জিয়াকে জামিন দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর দাবি জানিয়েছিলেন। এখন খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলামও একই কথা বলছেন। তবে সরকারের দিক থেকে বারবারই জামিন পাওয়ার বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার বলে মন্তব্য করা হয়েছে। সেলিমা ইসলাম অভিযোগ করেন, হাসপাতালে থাকলেও সেখানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা তেমন কিছুই হচ্ছেনা। "ডাক্তার সপ্তাহে একদিন আসে। ফিজিও থেরাপিস্ট ঠিক মতো আসেনা...ওখানে কোনো চিকিৎসাই হচ্ছেনা"। "জামিন পেলে বিদেশে তাকে আমরা পাঠাতে চাই। আমি তার বড় বোন"। সরকারের বক্তব্য কী তার বোনের শারীরিক অবস্থা এবং চিকিৎসা নিয়ে সেলিমা ইসলামের এসব দাবি সম্পর্কে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তাৎক্ষণিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, জামিন পাওয়ার উদ্দেশ্যে বিএনপি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে এসব বক্তব্য দিচ্ছে। তিনি বলেন, "তিনি যে হাসপাতালে আছেন সেটি বাংলাদেশের সেরা হাসপাতাল। তিনি এমনকি প্রিজন সেলেও নেই, তিনি কেবিনে রয়েছেন, যখন যা প্রয়োজন সমস্ত চিকিৎসাই তিনি পাচ্ছেন।" মাহবুবে আলম বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক সমস্যাগুলো প্রধানত তার বয়সের কারণে। "এ বয়সে এরকম সবারই কম-বেশী কিছু সমস্যা থাকে... আসলে জামিনের কারণে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এসব কথা বলা হচ্ছে।" খালেদা জিয়ার নিজের ইচ্ছে সেলিমা ইসলাম বলছেন, প্যারোলে নয়, শুধু জামিন পেলেই খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে রাজী আছেন। "এখন কোনো প্রক্রিয়াই কাজ করছেনা। না জামিন দিচ্ছে, না কোনো কিছুই । উনি (খালেদা জিয়া) প্যারোল চাচ্ছেননা। জামিনে মুক্ত হয়ে বাইরে গিয়ে চিকিৎসা নেয়াই তার ইচ্ছে"। "এটা সম্পূর্ণ ওনাদের (সরকার বা কর্তৃপক্ষের) ওপর নির্ভর করছে। ওনারা যদি জামিন দেয় বা পারমিশন দেয় তাহলেই সে যেতে পারবে"। তিনি বলেন, সরকারের সঙ্গে দলের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। "এখন অন্য কোনো পন্থা তো আমরা অবলম্বন করতে পারবোনা," বলেন সেলিমা ইসলাম। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় যথাক্রমে ১০ ও সাত বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন খালেদা জিয়া। গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার পর পুরানো ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছিলো খালেদা জিয়াকে । গত পহেলো এপ্রিল চিকিৎসার জন্য তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। বাংলাদেশে দুর্নীতির মামলায় কারাভোগরত বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য অবিলম্বে বিদেশে নেবার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা। +text: খেলার দেখার আশা নিয়ে মাঠে এসেছিলেন অনেক সমর্থক এই বিশ্বকাপে এই প্রথম সর্বোচ্চ দুটি ম্যাচ কোনরকম টস ছাড়াই পরিত্যক্ত হয়েছে। পরিত্যক্ত হওয়া আরও একটি ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে। "আমরা এক পয়েন্ট হারালাম"- সংবাদ সম্মেলনে এসে এমন হতাশার সুর বাংলাদেশ দলের কোচ স্টিভ রোডসের। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করুণারত্নে বলছেন, পয়েন্ট ভাগাভাগিতে হতাশ হলেও আবহাওয়ার ওপর কিছু করার নেই। ব্রিস্টলে সকাল সাড়ে দশটায় যে ম্যাচ শুরু হবার কথা ছিল - তা পরিত্যক��ত ঘোষণা করা হয় দুপুর ১টা ৫৭ মিনিটে। শ্রীলঙ্কার এটি টানা ২য় ম্যাচ যা বৃষ্টিতে ভেসে গেল। এ দু'ম্যাচ থেকে ১ পয়েন্ট করে নিয়ে ৪ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার পয়েন্ট দাঁড়ালো চার। এর আগে নিউজিল্যান্ডের কাছে হারলেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় পায় শ্রীলঙ্কা। অন্যদিকে ৪ ম্যাচে বাংলাদেশের পয়েন্ট এখন তিন। শ্রীলঙ্কার সাথে পয়েন্ট ভাগাভাগির আগে দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে জয়ের নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের কাছে টানা ২ ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। স্টিভ রোডস, বাংলাদেশ দলের কোচ বিবিসি বাংলায় আরো খবর: বাংলাদেশ-শ্রীলংকা ম্যাচ পরিত্যক্ত, পয়েন্ট ভাগাভাগি ম্যাচ পরিত্যক্ত হবার ঘোষণার পর ঘুরেফিরেই আলোচনায় ওঠে রিজার্ভ ডে না থাকার বিষয়টি। কারণ এবারের আসরে শুধু সেমিফাইনাল ও ফাইনালের জন্য রিজার্ভ ডে রাখা হয়েছে। রিজার্ভ ডে থাকা কি উচিত ছিল? এ বিষয়ে কি বললেন বাংলাদেশ কোচ স্টিভ রোডস ও শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে? স্টিভ রোডস-এর বক্তব্য "হ্যাঁ, আমি তো মনে করি অবশ্যই। বিশেষ করে আপনার যদি ইংলিশ আবহাওয়া সম্পর্কে ধারণা থাকে তাহলে তো অবশ্যই আপনি রিজার্ভ ডে রাখতে চাইবেন।" "অনেকেই আমার কাছে জানতে চেয়েছেন আবহাওয়া সম্পর্কে, কিন্তু আমার নিজের পক্ষেই এটা অনুমান করা মুশকিল। হ্যাঁ এটা একটা লম্বা টুর্নামেন্ট, লিগ ম্যাচের রিজার্ভ ডে রাখাটা কঠিন, কিন্তু যদি ম্যাচের পর বিরতি থাকে - তাহলে তো রিজার্ভ ডে রাখাই যেতো। তাহলে অন্তত দর্শকরা পরের দিন এসে ম্যাচ দেখতে পারতো।" ব্রিস্টলে আজ প্রায় সারা দিনই ছিল মেঘলা আকাশ আর বৃষ্টি দিমুথ করুনারত্নে বলেন: "রিজার্ভ ডে থাকলে আসলে দারুণ হতো। যদিও আমি জানি যে এরকম বড় টুর্নামেন্টে সব ম্যাচের রিজার্ভ ডে রাখাটা সহজ নয়।" "ম্যাচের পরদিনই আমাদের ভ্রমণ করতে হয়, তারপরও দর্শকরা যারা টিকিট কেটে আসছে তারা অন্তত খুশি হতো।" পয়েন্ট ভাগাভাগি স্টিভ রোডস "খুবই হতাশাজনক। আমাদের লক্ষ্য ছিল ২ পয়েন্ট। আমি জানি যে শ্রীলঙ্কাও এখানে জিততে এসেছিল।" ব্রিস্টলে বাংলাদেশের খেলা দেখতে আসা ছাতি-মাথায় দুই দর্শক "তবে আমি বলবো, আমরা ১ পয়েন্ট হারালাম। কিন্তু বৃষ্টি হলে তো আর কিছু করার নেই।" দিমুথ করুনারত্নে "আমরা খেলতে এসেছিলাম। যদিও মনে হতে পারে বৃষ্টিতে পয়েন্ট ভাগাভাগি হওয়া মাঝেমধ্যে খারাপ না। তবে এরকম ফ্রি পয়েন্ট পেতে আসলে ভালো লাগে না, শেষ পর্��ন্ত এরকম প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্টে মাঠে খেলাটাই মুখ্য।" "কিন্তু বৃষ্টি এসেছে, আমরা ১ পয়েন্ট পেয়েছি, হ্যাঁ আমি খুশি।" শ্রীলংকা দলের অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে পরবর্তী পরিকল্পনা স্টিভ রোডস "আমরা আসলে এখন সব ম্যাচই জিততে চাইবো। পরের ম্যাচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে, জয় ছাড়া কিছু ভাবছি না। কারণ এটাই শুধু আমাদের হাতে রয়েছে, কিন্তু আবহাওয়া আমাদের হাতে নেই।" "আমরা জানি যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ শক্তিশালী দল, তাদের আন্দ্রে রাসেলের মতো ক্রিকেটার রয়েছে, তবে আমরাও প্রস্তুত।" ব্রিস্টলে পতাকা-হাতে রেইনকোট পরা বাংলাদেশের সমর্থক দিমুথ করুনারত্নে "আমাদের পরের ম্যাচ অস্ট্রেলিয়ার সাথে অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং। তবে দল বেশ কিছুদিন বিশ্রাম পেয়েছে। এটা আমাদের প্রস্তুতিতে সাহায্য করবে।" সাকিব আল হাসানের ইনজুরির সর্বশেষ তথ্যও জানান বাংলাদেশ কোচ। আপাতত বিশ্রামে থাকলেও ১৭ই জুন টনটনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তাকে পাওয়ার আশা রাখছেন রোডস। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: বাংলাদেশ-শ্রীলংকা ম্যাচ পরিত্যক্ত, পয়েন্ট ভাগাভাগি এটিএম বুথ: কতভাবে হ্যাক হতে পারে? আজ ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে বাংলাদেশের সামনে কঠিন সমীকরণ পাঁচ বছরের মধ্যে অবৈধ শ্রমিক তাড়াবে মালয়েশিয়া? আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯-এ বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হবার পর অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন: লিগ স্তরের ম্যাচগুলোয় কি রিজার্ভ ডে রাখা দরকার ছিল? +text: করোনাভাইরাস ঠেকাতে হাসপাতালের চিকিৎসকরা, জীবানু প্রতিরোধী বিশেষ পোশাক, মুখোশ, চশমা আর দস্তানা পরে কাজ করেন। যার সবশেষ উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যায়, রবিবার রংপুরে চীনফেরত এক শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর চাঞ্চল্য শুরু হওয়ার খবরের কথা। যদিও শিক্ষার্থীটির শরীরে করোনাভাইরাসের কোন উপসর্গ ছিল না, তারপরও তাকে করোনা ইউনিটে নিয়ে আলাদা করে রাখার পর এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট বা আইইডিসিআর-এর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা মনে করছেন মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে, এবং সেটাকে তিনি অধিক মাত্রায় প্রচার প্রচারণা সচেতন করার চেষ্টার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বলে মনে করেন। তিনি বলেন, "আমার মনে হয় আমাদের প্রচার-প্রচারণা মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি, মানুষের মনের মধ্যে একটুখানি আতঙ্কও সৃষ্টি করে ফেলেছে।" আবার মানুষ সঠিকভাবে সচেতন হচ্ছে কি না কিংবা আতঙ্কিত হয়ে ভুল পদক্ষেপ নিচ্ছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। রংপুর মেডিকেল কলেজের ঘটনায় রবিবার বহু মানুষ আতঙ্কিত হয়ে হাসপাতালে ছুটে আসছিলেন বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন একজন স্থানীয় সাংবাদিক। এদিন জাতীয় গণমাধ্যমগুলোর অনেক সাংবাদিককেই দেখা যায়, হাসপাতালটির নবনির্মিত করোনা ইউনিটের ঠিক সামনেই দিনভর ভিড় করে থাকতে। অথচ আতঙ্কিত হবার সত্যিই যদি কোন কারণ থাকতো তাহলে এই মানুষগুলোর হাসপাতালের ত্রিসীমানায় ভেড়ার কথা নয়। বিবিসির কাছে একটি ছবি এসেছে রংপুরের ওই হাসপাতাল থেকে, যাতে দেখা যাচ্ছে, চারজন জীবানুনিরোধী পোশাক পরিহিত ডাক্তারের পাশে একজন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আছেন যার সংক্রমণ ঠেকানোর কোন প্রস্তুতি আছে বলে চোখে পড়ছে না। এর আগে, চীন থেকে ফিরিয়ে আনা বাংলাদেশিদের বিআরটিসির বাসে করে আশকোনার হজ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার ছবি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যেখানে দেখা যায় যে, ওই বাসগুলোতে করে ফিরে আসা বাংলাদেশিদের দেখতে রাস্তার দুপাশে এবং হজ ক্যাম্পের বাইরে নাক চেপে ধরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন উৎসুক মানুষেরা। এসব ছবিই বলে দিচ্ছে, মানুষ আতঙ্কিত হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু সংক্রমণ ঠেকাতে বা রোগ থেকে দূরে থাকতে কি করতে হবে সেই তথ্য তাদের কাছে নেই। আরো পড়তে পারেন: চীন থেকে বাংলাদেশিদের ফেরত আনা যাচ্ছে না যে কারণে করোনাভাইরাস: রুশ মিডিয়ায় মার্কিন ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত করোনাভাইরাসের টিকা আছে? আক্রান্তরা পুরো ভালো হচ্ছেন? এই স্কুলগামী শিশুদের দেখা যাচ্ছে মাস্ক পরে রয়েছে। অথচ কাপড়ের তৈরি এই মাস্কটি জীবানু বা সংক্রমণ ঠেকানোর উপযোগী নয়। বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে তৈরি এই মাস্কটি শুধুমাত্র রাস্তার ধুলোবালি ঠেকাতে পরে থাকতে দেখা যায় অনেককে। মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা পরামর্শ দিচ্ছেন, 'অযথা আতঙ্কিত না হতে'। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত চীন থেকে এসেছে এমন ৫৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে যাদের মধ্যে ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ ছিল। কিন্তু চূড়ান্ত পরীক্ষার পর এদের কারো শরীরেই করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। এছাড়া চীন বা অন্য দেশের লোকজন আসার পর তাদেরকে স্ক্রিনিং করা হয় এবং তাদেরকে নিয়মিত যোগাযোগের মধ্যে রাখা হয়। তাই তাদের মধ্যে যদি করোনাভাইরাসের উপ���র্গ দেখা যায় তাহলে দ্রুত আইসোলেশনে নেয়ার ব্যবস্থা করা রয়েছে বলেও জানান তিনি। আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, "কেউ চীন থেকে ফিরলেই যে তিনি করোনা আক্রান্ত নন, কিংবা করোনা আক্রান্ত হলেও যে তিনি অস্পৃশ্য নন, সে বিষয়টি সবাইকে বুঝতে হবে"। আইইডিসিআর-এর পরামর্শ: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এবং এতে কয়েকশ মানুষের প্রাণহানির খবরের পর ছোঁয়াচে এই রোগটি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। +text: এই প্রতিযোগিতার শুরু ১৯০৯ সালে। প্রতি বছর মূলত এই সময়েই বন্দরনগরী চট্টগ্রামের লালদীঘির মাঠে এর আয়োজন হয়। বলী খেলাকে ঘিরে থাকে বৈশাখী মেলার আয়োজন। বুধবার বিকেল চারটার দিকে এই আয়োজনের উদ্বোধন হবে। তিনদিন ধরে চলবে মেলা। মূল কুস্তি প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে কাল বৃহস্পতিবার থেকে। যেভাবে শুরু হয়েছিলো এই কুস্তি প্রতিযোগিতা বলী খেলা মানে কুস্তি প্রতিযোগিতা। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কুস্তিকে বলী খেলা নামে ডাকা হয়। ১৯০৯ সালে প্রথম এই প্রতিযোগিতার প্রবর্তন করেন চট্টগ্রামের জমিদার আব্দুল জব্বার সওদাগর। নামই বলে দেয় স্থানীয় প্রভাবশালী এবং একজন ধনী ব্যক্তি ছিলেন তিনি। এই বলীখেলার উপর গবেষণা করেছেন চিটাগাং সেন্টার ফর অ্যাডভ্যান্স স্টাডিজের সদস্য সচিব ড. শামসুল হোসাইন। আরো পড়ুন: দিদার কিভাবে হয়ে উঠেছিলেন সেরা বলী ? বিয়ে না করাই বলীখেলায় সাফল্যের কারণ! বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, "সে সময় যখন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন চলছিলো - রাজনৈতিক একটা আইডিয়া এটার পেছনে এসে তখন দাঁড়িয়ে যায়। তখন তরুণ প্রজন্মকে শারীরিকভাবে সমর্থ করার ধারণা থেকে এই প্রতিযোগিতা প্রথম চালু করেন জব্বার সওদাগর। "উদ্দেশ্য ছিল, তারা যেন আন্দোলনে অংশ নিতে পারেন তার জন্য শারীরিকভাবে তাদের প্রস্তুত করা।" এবারের বলীখেলায় এখনো পর্যন্ত ৬০ জন বলী অংশগ্রহণের জন্য নাম লিখিয়েছেন। মি. হোসাইন বলছিলেন, "এর মধ্যে আরেকটি বিষয় ছিল মুসলিম তরুণদের অংশগ্রহণ বাড়ানো। সেই সময় ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামের হিন্দুদের অংশগ্রহণ বেশি ছিল। " তিনি আরও বলেন, "কুস্তি এই অঞ্চলের অত্যন্ত প্রাচীন সাংস্কৃতিক উপকরণ। মধ্যযুগে সেনাবাহিনীতে যারা চাকরি নিতো তাদের শারীরিক সামর্থ্য বৃদ্ধির জন্য তারা কুস্তি করতেন। সেখান থেকেই এর শুরু।" আব্দুল জব্বার সওদাগর নিজের নামেই এই বলীখেলার নামকরণ করেছেন। সেখান থেকেই এর নাম জব্বারের বলীখেলা। স্মৃতিচারণ জব্বার সওদাগরের নাতির আব্দুল জব্বার সওদাগরের ছেলের ঘরের নাতি শওকত আনোয়ার বাদলের জন্ম ১৯৫৫ সালে। এই প্রতিযোগিতার শুরুটা না দেখলেও তার বাবার মুখে শুরুর দিককার অনেক গল্প তিনি শুনেছেন। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, "আমার দাদার মৃত্যুর পর আমার বাবা এর দায়িত্ব নেন। তিনিই এটার আয়োজন করতেন। আমরা যখন দেখেছি, তখন এই প্রতিযোগিতা এতটা প্রসারিত ছিল না। এটি শুধুমাত্র লালদিঘী এলাকার বলীদের জন্যই আয়োজন করা হতো।" তিনি সেই সময়কার পরিবেশ বর্ণনা করে বলছিলেন, "সে সময় এলাকায় ঢোল বাজত, সাথে থাকতো কুস্তিগীরেরা। আমরা ঢোলের পিছে পিছে ঘুরতাম। এভাবে তারা এসে মাঠে ঢুকত। আমি তখন স্কুলে পড়ি।" প্রথম টেলিভিশনে সম্প্রচার শুরু হওয়ার পর পরিচিত হয়ে ওঠে জব্বরের বলীখেলা। তিনি জানান, তিনি তার বাবার মুখে শুনেছেন খেলাটা কিছুটা প্রচলন হওয়ার পর বলীরা সেই সময় মাস দু'য়েক আগে এসে জড়ো হতেন। তাদের বাড়িতেই বড় একটা বৈঠকখানা ছিল। সেই ঘরেই থাকতেন। সেখানেই তারা খাওয়াদাওয়া করতেন এবং দিনভর নানা শারীরিক কসরত ও অনুশীলন করতেন, প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুতি নিতেন। মি. আনোয়ার ঠিক সময়টা সেভাবে মনে করতে পারেন না ঠিক কবে তার বাবার হাতে এই আয়োজনের দায়িত্ব বর্তায়। তবে তিনি বাবার মৃত্যুর পর ১৯৮৬ সাল থেকে এই আয়োজনের নানা খুঁটিনাটি বিষয়ের সাথে আরও সরাসরি জড়িয়ে গেছেন। সারা দেশের বলীরা কিভাবে যোগ দিলেন শওকত আনোয়ার জানান, ধীরে ধীরে চট্টগ্রামের নানা এলাকার বলী বা কুস্তিগীরেরা এই প্রতিযোগিতায় আসতে শুরু করেন। কুস্তি খেলার প্রচলন ছিল বাংলাদেশের সকল জেলায়। মি. আনোয়ার বলেন, "আমি যখন লেখাপড়া করি তখন দেখতাম চট্টগ্রামের আশপাশের জেলা - নোয়াখালী, কুমিল্লা এসব জায়গা থেকেও বলীরা আসতে শুরু করলো। এরপর সারা দেশ থেকে আসতে শুরু করে। এমনকি একবার আমার মনে আছে, ফ্রান্স থেকে দুজন কুস্তিগীর এখানে অংশগ্রহণ করেছিলো।" সত্তরের দশক থেকে ধীরে ধীরে সারা দেশের বলীরা আসছেন বলে জানান মি. আনোয়ার। তিনি বলছেন, এটার যখন প্রথম টেলিভিশনে সম্প্রচার শুরু হয় তখনই এর সম্পর্কে সবাই আরও ভালোভাবে জানতে পারেন। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আই প্রথম এর সম্প্রচার করেছিলো। এরপর এখন সকল টিভি চ্যানেল সম্প্রচার করছে আর গণমাধ্যমের আগ্রহের কারণে জব্বারের বলীখেলা সম্পর্কে আরও প্রচার হয়েছে, জানান মি. আনোয়ার। বলীখেলাকে ঘিরে থাকে বৈশাখী মেলার আয়োজন। এখন যেভাবে হয় এই প্রতিযোগিতা জব্বারের বলীখেলার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চকোরিয়ার জীবন বলী। তবে এই প্রতিযোগিতার সবচাইতে বেশি পরিচিত নাম কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার দিদারুল আলম বা দিদার বলী, যিনি সব মিলিয়ে সাতবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। তিনি অবশ্য বছর দু'য়েক আগে অবসরে গেছেন। জব্বারের বলীখেলা আয়োজন কমিটির সভাপতি জওহরলাল হাজারী। তিনি জানান, এখনো পর্যন্ত এবারের বলী খেলায় ৬০ জন কুস্তিগীর অংশগ্রহণের জন্য নাম লিখিয়েছেন। তবে সংখ্যাটা আরও বড় হবে। সাধারণত দেড়শো' জনের মতো কুস্তিগীর এখানে আসেন। তিনি আরও বলেন, "সারা বাংলাদেশে যত কুস্তিগীর আছেন, যাদের প্রতিভা বিকশিত হওয়ার কোন পন্থা নেই, তাদের এখানে আসতে সহযোগিতা করা হয়। তাদের এই প্রতিযোগিতায় কসরত প্রদর্শন করার সুযোগ দেয়া হয়।" এখানে পাঁচটি ধাপে প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে। প্রথম বাছাইয়ের পরের রাউন্ড পর্বে ৫০ জনকে নিয়ে খেলা হয়। সেখান থেকে ২৫ জন যায় মূল চ্যাম্পিয়ন পর্বে। এখানে পয়েন্ট কোন পয়েন্ট ব্যবস্থা নেই। কুস্তি করতে করতে মাটিতে যার পিঠ যে ঠেসে ধরতে পারবে সে-ই বিজয়ী হবে। এছাড়া বলী খেলাকে কেন্দ্র করে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা চলে। দুর-দূরান্ত থেকে আসা বিক্রেতারা গ্রামীণ নানা সামগ্রী নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেন। সেটিও মেলার অন্যতম আকর্ষণ। জওহরলাল হাজারী আরও বলেন, চট্টগ্রামের বলী খেলাকে আরও প্রসারের চিন্তা করা হচ্ছে। সে রকম সরকারি আশ্বাস রয়েছে। শহরের স্টেডিয়ামের পাশে প্রশিক্ষণের জন্য একটি কেন্দ্রে স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে। অন্যান্য খবর: সৌদিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর একজনকে 'ক্রুশবিদ্ধ' জাপানি যে পদ্ধতি আপনার সঞ্চয়ে সাহায্য করতে পারে 'এটা কি হলো?': শোকস্তব্ধ ঢাকার শ্রীলংকানরা এবার একশ' দশ বছর হচ্ছে 'জব্বারের বলীখেলা' নামের বিখ্যাত কুস্তি প্রতিযোগিতাটির। +text: বলা হচ্ছে অভিযানে জব্দ করা আধা টন গাঁজা ইঁদুর খেয়ে ফেলেছে। গত দু বছর ধরে সেগুলো বিভিন্ন অভিযানে জব্দ করা হয়েছে। এমিলিও পরতেরো শহরের নতুন পুলিশ কমিশনারের দায়িত্ব নিয়েছেন। সব কিছুর খোঁজ খবর নিতে গিয়ে আবিষ্কার করলেন বিশাল পরিমাণে গাঁজার কোন হদিস নেই। স্বভাবতই তার পূর্ববর��তী কমিশনার হাভিয়ের স্পেশিয়ার দিকেই তাক করা হল সন্দেহের তীর। কারণ তিনি তার পদ ছেড়ে যাওয়ার সময় সংরক্ষণাগারে কি সামগ্রী জমা আছে সে বিষয়ে কাগজপত্রে কোন সাক্ষর করেননি। তদন্তের সময় মি স্পেশিয়া জানালেন যে ঐ গাঁজা নাকি ইঁদুরে খেয়েছে। ইঁদুর সম্ভবত গাঁজাকে খাবার ভেবে ভুল করেছিলো, এমনটাই ছিল তার যুক্তি। কিন্তু ইঁদুর কি গাঁজা খায়? তাও আবার সাড়ে পাঁচশো কেজি? অর্থাৎ আধা টনের মতো। অতএব বিষয়টি নিয়ে গবেষণা ও তদন্ত শুরু হল। বুয়েনস এরিস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা জানালেন, ইঁদুর গাঁজাকে খাবার হিসেবে ভুল করবে সেটা সম্ভব নয়। আর যদি ভুল হয়েও থাকে সেক্ষেত্রে ইঁদুরগুলোর শরীরে রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া হতো আর তাতে তারা নির্ঘাত মারা পড়তো। এখন ইঁদুরের ঘাড়ে দোষ চাপানোর দায়ে বুয়েনস এরিস শহরে আটজন পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। মে মাসের শুরুতে তাদের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বিচারকের সামনে সাক্ষ্য দিতে হবে। চাকরীতো গেছেই, এখন গাঁজা খাওয়ার দায়ে ইঁদুরকে দোষী সাব্যস্ত করতে না পারলে জেলেও জেতে হতে পারে তাদের। আর্জেন্টিনার বুয়েনস এরিস শহরের কাছে পুলিশের একটি সংরক্ষণাগারে বিভিন্ন সময় জব্দ করা ছয় হাজার কেজির মতো গাঁজা রাখা ছিল। +text: বদলি হিসেবে নেমে ইয়োরোপিয়ান কাপ/চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে দুই গোল করা একমাত্র খেলোয়াড় গ্যারেথ বেল ম্যাচের প্রথমার্ধেই ঘাড়ে চোট পাওয়ায় মাঠ ছাড়েন লিভারপুলের মিশরীয় ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ সালাহ। লিভারপুল গোলরক্ষক লরিস কারিয়ুসের হাস্যকর এক ভুলের সুযোগ কাজে লাগিয়ে করিম বেনজেমা গোল করলে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যায় রেয়াল। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে গোল করে লিভারপুলকে সমতায় ফেরান সাদিও মানে। ঘাড়ে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ছেন সালাহ তবে বদলি হিসেবে মাঠে নামার তিন মিনিটের মধ্যেই রেয়ালকে আবার এগিয়ে নেন গ্যারেথ বেল। তাঁর ঐ গোলকে মনে করা হচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের ইতিহাসের অন্যতম সেরা গোলগুলোর একটি। লিভারপুলের ষষ্ঠ ইয়োরোপিয়ান কাপের স্বপ্নভঙ্গ হয় গোলরক্ষক কারিয়ুসের আরেকটি ভুলে। গ্যারেথ বেলের দূরপাল্লার শট বুঝতে ভুল করে নিজের জালেই বল জড়ান এই জার্মান গোলরক্ষক। শেষপর্যন্ত ৩-১ গোলে ম্যাচ জিতে জয়ে ১৩তম ইয়োরোপিয়ান কাপ শিরোপা নিশ্চিত করে রেয়াল মাদ্রিদ। বায়ার্ন মিউনিখের (১৯৭৪ থেকে ১৯৭৬) পর প্রথম ক্লাব হিসেবে টানা তিনবার ইয়োরোপিয়ান কাপ/চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতলো রেয়াল মাদ্রিদ। ৪২ বছরে প্রথমবার - পরিসংখ্যান আরো পড়ুন: ক্রিকেটের মতো ভিডিও রেফারি হবে ফুটবল মাঠেও ইংলিশ ফুটবল ফ্যানদের গান গাওয়া কি কমে যাচ্ছে? গ্যারেথ বেলের দুই গোলে - যার মধ্যে একটি চোখ ধাঁধানো ওভারহেড কিক ছিল - রেয়াল মাদ্রিদ লিভারপুলকে হারিয়ে টানা তৃতীয়বারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জিতেছে। +text: ভবিষ্যতে যেসব দম্পতি দুটি সন্তান নিতে চাইবেন তাদের যেকোনো একজনকে হতে হবে তাদের বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। শুক্রবার চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া এ কথা জানিয়েছে। এ সপ্তাহে শীর্ষ কমিউনিস্ট পার্টির একটি বৈঠকের পর সরকার এ পদক্ষেপ নিয়েছে। এছাড়াও শ্রমশিবির বন্ধ করে দেয়াসহ বিভিন্ন আইন ও নীতিমালায় ব্যাপক সংস্কার করার ঘোষণা দিয়েছে চীনা কর্তৃপক্ষ। এক সন্তান নীতি শিথিল করার ঘোষণার পর বেইজিংয়ের জনসাধারণ বিভিন্নভাবে তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। একজন যুবক বলছেন,“নতুন এই সিদ্ধান্তকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি। আমি পুরনো নীতির সাথে একেবারই একমত ছিলামনা। আমি একটি ছেলে সন্তানের পাশাপাশি একটি মেয়ে সন্তানও চাই বেশিরভাগ পরিবারই এখন দুটো সন্তান চায়”। তবে একজন বৃদ্ধ বলছেন,“পুরনো নীতিটিই ভালো ছিল। আমাদের দেশের জনসংখ্যা এক বিলিয়নের উপরে। আমরা যদি এখন দুটো সন্তান নেয়াটা সমর্থন করি তাহলে খুব তাড়াতাড়ি দেশের জনসংখ্যা ২ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে। আমি পুরনো নীতিতেই থাকতে চাই”। অন্যদিকে এক দম্পতি বলছেন,“আমাদের মনে হয় এই নতুন নীতিটাই ভালো। আমরা সন্তান নেয়ার কথা ভাবছি। আমাদের কাছে মনে হয় একজন সন্তান যদি থাকে তাহলে তার উপর পরিবারের অনেক চাপ এসে পড়ে। তাকে দুটো পরিবারের বৃদ্ধ লোকদের দেখতে হয়। কিন্তু দুটি সন্তান যদি থাকে তাহলে তারা দুজনে মিলেই পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে পারবে। আর দুটি সন্তান থাকলে তারা একে অপরের ভালো বন্ধুও হয়ে উঠতে পারে”। চীনে জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধির হার কমাতে ১৯৭০ সাল থেকে এক সন্তান নীতি চালু করে দেশটির সরকার। এই নীতিটি খুব কড়াভাবে কার্যকর করা হলেও এটি সমালোচনার মুখে পড়ে। মানবাধিকার কর্মীদের তথ্যমতে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে জোর করে গর্ভপাতের মাধ্যমে এই নীতি কার্যকর করা হয়েছে, এমন ঘটনাও রয়েছে। যদিও সংখ্যালঘুদের জন্য এই আইন কার্যকর ছিলনা। সংস্কার পরিকল্পনার আওতায় আরো যা থাকছে তা হলো, কৃষকদের সম্পত্তির অধিকার বাড়বে তাদের জমির ওপর, সরকার নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানগুলো আরো স্বাধীনভাবে কাজ করবে এবং ব্যক্তিগত ব্যাংক ব্যবস্থা চালু হবে। এবং উল্লেখযোগ্য একটি সংস্কার পরিকল্পনা হলো, দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড পর্যায়ক্রমে কমিয়ে আনা। বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘিত যেন না হয় ও বিচারিক আদালতের ক্ষমতা যেন বাড়ানো যায় সেজন্যে এই নীতিটি পরিবর্তন করা হবে। চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সপ্তাহব্যাপী সম্মেলন থেকে বেশ কিছু অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ‘এক সন্তান নীতি’ পরিবর্তন হচ্ছে অন্যতম। +text: ইউটিউবের প্রধান কার্যালয়ে গোলাগুলির শব্দ পাওয়ার পর সেখানে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে পরে ওই নারী বন্দুকধারীকে নিহত অবস্থায় পায়া যায়।। সে নিজের গুলিতেই মারা গেছে বলে পুলিশ বলছে। গুলিতে অন্তত তিনজন আহত হয়েছে, যাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সান ব্রুনো কার্যালয়ে হঠাৎ করে গোলাগুলির শব্দ শোনার পর কর্মীরা দ্বিগ্বিদিক পালাতে শুরু করে। এরপর পুলিশ সদর দপ্তরের চারদিকে অবস্থান নেয়। বেশ কয়েকজনকে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হয়েছে, যদিও তাদের অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়নি। ইউটিউবের মালিক প্রতিষ্ঠান গুগল জানিয়েছে, ইউটিউব কার্যালয়ে গোলাগুলির খবর পেয়ে তারা একটি তদন্ত শুরু করেছে। স্থানীয় টেলিভিশনের ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে, অনেকে বিভিন্ন ভবন থেকে মাথার ওপর হাত উঁচু করে বেরিয়ে আসছে ইউটিউবের কার্যালয়ে বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স যেতে দেখা গেছে। মানুষজনকে ওই এলাকা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ। ভবন থেকে দ্রুত পালাতে গিয়েও অনেকে আহত হয়েছে। স্থানীয় টেলিভিশনের ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে, অনেকে বিভিন্ন ভবন থেকে মাথার ওপর হাত উঁচু করে বেরিয়ে আসছে। ইউটিউবের এই কার্যালয়ে প্রায় ১৭০০ কর্মী কাজ করে। ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট ইউটিউবের সদর দপ্তরে একজন নারী বন্দুকধারী হামলা চালিয়েছে বলে পুলিশ বলছে। +text: ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ এনে সমাবেশ করছে বামপন্থী সংগঠনগুলো গত প্রায় নয় বছর ধরে যেহেতু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রয়েছে সেজন���য তাদের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বেশি। ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তারা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একচ্ছত্র আধিপত্য তৈরি করেছে। এই সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তারা ভিন্ন মতাবলম্বী প্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠনগুলোর উপরও মাঝে-মধ্যে চড়াও হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে কয়েকদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী নিপীড়ন এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ এনে সোমবার বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল। অনেকে মনে করেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নির্বাচিত ছাত্র সংসদ না থাকায় অনেক বছর ধরে ক্ষমতাসীনদের ছাত্র সংগঠনগুলো ক্যাম্পাসে নিজেদের মতো করে আধিপত্য তৈরি করছে। ছাত্র সংসদ কার্যকরী করার পক্ষে সবচেয়ে বেশি জোরালো দাবী তোলে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো। তাঁদের ধারণা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যদি ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়মিত অনুষ্ঠিত হতো তাহলে হল দখল, ক্যান্টিনের নিয়ন্ত্রণ কিংবা টেন্ডারবাজির মতো ঘটনা ঘটতো না। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের নেতা লিটন নন্দী বলেন, "যখন আপনি শিক্ষার্থীদের ভোটের কথা চিন্তা করবেন, তখন আপনার মাঝে এমন কিছু গুণাবলী থাকতে হবে যার কারণে শিক্ষার্থীরা আপনাকে নির্বাচিত করবে।" গত প্রায় ৩০ বছর ধরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংসদের কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। লিটন নন্দী, সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ফলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অনেকের কোন ধারণাই নেই যে ছাত্র সংসদ কীভাবে কাজ করে। কিন্তু তারপরও অনেকে মনে করেন, ছাত্র সংসদ কার্যকরী থাকা উচিত। ছাত্র সংসদ কার্যকরী থাকলে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের একাধিপত্য চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তো বলে তাদের ধারণা। বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের কথা বলা থাকলেও কর্তৃপক্ষ বরাবরই নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে অনীহা দেখিয়ে আসছে। ছাত্র সংসদ কার্যকরী হলে প্রকৃতপক্ষে কতটা লাভ হবে এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাঝেও অবশ্য মতভিন্নতা রয়েছে। ছাত্র সংসদ কার্যকরী হলে প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা রয়েছে বলে অনেক শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ধারণা। ঢাকা বিশ্বব���দ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক গিয়াস শামীম মনে করেন, ছাত্র সংসদ কার্যকরী করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দুটো দিকই আছে। "হয়তো ডাকসু নির্বাচন হলে মঙ্গল হতে পারে। পরীক্ষামূলকভাবে এটি হতে পারে। কিন্তু কতটুকু ভালো হবে, এটি একটু ভাববার বিষয় আমাদের। ইতিবাচক দিক হয়তো আছে, কিন্তু সেটি স্বাধীনতা পরবর্তীকালে আমার কাছে খুব দৃশ্যমান নয়," বলছিলেন অধ্যাপক শামীম। অধ্যাপক গিয়াস শামীম অভিযোগ রয়েছে যে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন যাতে ক্যাম্পাসগুলোতে আধিপত্য তৈরি করতে পারে, সেজন্য সরকারের মনোভাব অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ছাত্র সংসদ কার্যকরী করতে চায় না। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এ ধরনের বক্তব্য মানতে নারাজ। তিনি বলেন, ছাত্রলীগ ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে। তার ধারণা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যদি ছাত্র সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে ছাত্রলীগ জয়লাভ করবে। সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, "ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্রলীগ। আজকে সব ক্যাম্পাসের দেখভাল করে ছাত্রলীগ। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের সমস্যা দেখভাল করে ছাত্রলীগ।" বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অনেকেই মনে করেন, ছাত্র সংসদ কার্যকরী হলেও সেখানে যদি রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রভাব বজায় রাখার চেষ্টা করে, তাহলে শিক্ষার্থীদের কতটা লাভ হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে। বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারেন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আইসিটি অ্যাক্ট থেকে ভিন্ন? বাংলাদেশে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য কতটা সুরক্ষিত? চট্টগ্রাম টেস্ট: শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে স্পিন কি বুমেরাং হবে? বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের দ্বারা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একচ্ছত্র আধিপত্য তৈরি করা নতুন কিছু নয়। +text: রমজান মাসে চট্টগ্রাম নগরীর কোথাও সেহরি অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হলে পূর্ব অনুমতি নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে রবিবার একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে - রমজান উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগরীতে কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি যদি "সেহরি নাইট" আয়োজন করতে চান তাহলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের "সিটি স্পেশাল" ব্রাঞ্চ থেকে পূর্বানুমতি গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হল। এ বিষয়ে মহানগর পুলিশ কমিশনার মোঃ মাহব���বুর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ''রমজান মানে অনেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সেহরি নাইটের আয়োজন করেন, যেখানে অনেক মানুষ সমবেত হয়।" সেহরি অনুষ্ঠানের আগে অনুমতি নিতে বলেছে চট্টগ্রামের পুলিশ। "যেহেতু সেখানে নিরাপত্তা বিষয় আছে, তারা ছিনতাইকারীর কবলে পড়তে পারেন বা কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, তাই এ ধরণের অনুষ্ঠান আয়োজনের আগে পুলিশের অনুমতি নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।'' তিনি বলছেন, ''মহানগরীতে যেকোনো সমাবেশ করার আগে তো পুলিশকে জানানো উচিত।'' চট্টগ্রাম নগরীর স্পেশাল ব্রাঞ্চ থেকে এই অনুমতি নিতে হবে। তবে পরিবার নিয়ে বাইরে বা হোটেল সেহরি খেতে যাওয়ায় কোন বিধি-নিষেধ নেই বলে তিনি জানান। আরো পড়ুন: বাংলাদেশে রোজা পালনকারীর জন্য জরুরী ১১টি পরামর্শ একমাস রোজা রাখলে যা ঘটে আপনার শরীরে রোজা: ছয়টি অতি পরিচিত ভুল ধারণা শিশুদের কি রোজা রাখতে দেয়া উচিত? সম্প্রতি কয়েক বছর ধরে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বড় শহরগুলোয় রমজান মাসে বিভিন্ন হোটেল ও কমিউনিটি সেন্টারে সেহরি খাওয়ার অনুষ্ঠান আয়োজনের চল শুরু হয়েছে। গত বছর রমজানের সময় নগরীর জিআইসি কনভেনশন হলে সেহরি অনুষ্ঠানে গান ও জাদু প্রদর্শনীর আয়োজন করা হলে সেটি বন্ধ করে দিয়েছিল পুলিশ। সম্প্রতি কয়েক বছর ধরে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বড় শহরগুলোয় রমজান মাসে বিভিন্ন হোটেল ও কমিউনিটি সেন্টারে সেহরি খাওয়ার অনুষ্ঠান আয়োজনের চল শুরু হয়েছে। এছাড়া অনেক রেস্তোরাঁয় সেহরি খাওয়ার ব্যবস্থা থাকে, যেখানে পরিবার বা বন্ধুদের স্বজনদের নিয়ে অনেকে খেতে যান। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: এশিয়াতে একীভূত হচ্ছে টেলিনর-আজিয়াটা ইরানের বিরুদ্ধে কেন রণতরী পাঠালো যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষ নারী পুলিশ কর্মকর্তা কঙ্গোতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত রাশিয়ায় মধ্য আকাশে বিমানে আগুন, নিহত ৪১ বাংলাদেশে রমজান মাসে চট্টগ্রাম নগরীর কোথাও সেহরি অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হলে পূর্ব অনুমতি নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ। +text: দ্বিতল পদ্মা সেতুর উপরে গাড়ি ও নীচে রেল লাইন থাকবে তবে বাংলাদেশের রেল মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলছেন, প্রকল্পে কোনো তহবিল সংকটের সুযোগ নেই। কারণ এটি চীন সরকারের ঋণের টাকায় করা হচ্ছে। চীনের অর্থায়নে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কি��োমিটার রেললাইন নির্মাণ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড। প্রকল্পের লক্ষ্য পদ্মা সেতু যেদিন যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে সেদিন থেকেই যেন সেতুর ওপর দিয়ে রেলও চলাচল করতে পারে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড গণমাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দাবি করেছে যে তহবিল সংকটের কারণে প্রকল্পটি সময়মত শেষ করাই এখন বিপর্যয়ের মুখে। তাদের দাবি গত সাত মাসে তারা কোনো বিল পায়নি যার পরিমাণ প্রায় ৪,৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক গোলাম ফখরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এসব দাবি মোটেও সত্যি নয়। আরও পড়তে পারেন: রেলওয়ের মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প তিনি বলেন, "তাদের কথা মোটেও সত্যি নয়। আমাদের অতিরিক্ত কিছু অর্থ দরকার। তার প্রস্তাব দিয়েছি মন্ত্রণালয়ে। গত এক বছরে ১৮০০ কোটি টাকা ব্যয় করেছি। কাজের গতিও ঠিক আছে বরং আরও বাড়িয়েছি আমরা।" ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড একটি জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে তাদের বক্তব্য পাঠিয়েছে। এতে বলা হয়েছে ২০১৮ সালে প্রস্তুতির জন্য তারা অগ্রিম অর্থ পেলেও এরপর প্রতিবারই অর্থ পেতে অনেক বেশি সময় লেগেছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় নির্মাণ সামগ্রী কেনা ও সরবরাহকারীদের পাওনা পরিশোধ করা যাচ্ছেনা। এর ফলে কমে এসেছে কাজের গতি। অন্যদিকে বাংলাদেশের রেল মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলছেন, গণমাধ্যমে বিবৃতি থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে তারা যোগাযোগ করেছে এবং প্রতিষ্ঠানটি নিজেই বিবৃতিটির প্রতিবাদ দেবে বলে মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে। কিন্তু প্রকল্পে তহবিল সংকটের যে প্রসঙ্গ এসেছে সে সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেসব তথ্য এসেছে তার সাথে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের কোনো সম্পর্কই নেই। তিনি বলেন, "ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলেছে এটি (বিবৃতি) ভুলবশত: এসেছে। কাজ করবে, টাকা নেবে - এটাই হলো সিস্টেম। আর এটার সিংহভাগ টাকা চীন সরকারের ঋণ। আমাদের কিছুটা আছে। চীন সরকার অর্থ দেবে। তাই অর্থ সংকটের সুযোগই নেই।" ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞপ্তি বিবৃতিতে চায়না রেলওয়ে দাবি করেছে, গত বছর জুলাই থেকে চলতি বছর জানুয়ারি পর্যন্ত ব্যয় করা অর্থের যোগান নিয়ে ঢিমেতালে কাজ করছ বাংলাদেশ রেলওয়ে ��বং এই রেলওয়ের অভ্যন্তরীণ কারণেই ২০১৮ সালের জুনের পর থেকে গত সেপ্টেম্বরের আগ পর্যন্ত তারা কোনো পেমেন্ট পায়নি। তবে রেল মন্ত্রী বলছেন, এসব কথার সাথে প্রকল্পের কোনো সম্পর্কই নেই। তিনি বলেন, "কাজের গতি ঠিকই আছে। আমরা সন্তুষ্ট। ঠিকাদার কাজ করে টাকা নেবে। অগ্রিম টাকা সবসময় দেয়া হয়না। বিল দিয়ে টাকা নেয়। এক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে।" তবে বিষয়টি নিয়ে বিবৃতি দেয়ার আগে সরকারের সাথে কোনো আলোচনা করেছে কিনা, কিংবা করলে সরকার কি বলছে এসব বিষয় নিয়ে চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেডের নির্ধারিত জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যোগাযোগ করলেও তারা বিবিসির সাথে কথা বলতে রাজী হয়নি। ওদিকে রেলওয়ে কর্মকর্তারা বলছেন, করোনার কারণে কাজের গতি কমলেও এখন পর্যন্ত প্রায় চল্লিশ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। তারা আশা করছেন বাকী কাজও নির্ধারিত ২০২৪ সালের মধ্যে শেষ হবে যদিও এর মধ্যে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত কাজ আগেই শেষ হবে এবং সেতু উদ্বোধনের দিন থেকেই রেলও চলতে পারবে। বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: বাংলাদেশ সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোর একটি পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটি বড় ধরণের তহবিল সংকটে পড়েছে বলে দাবি করে ঠিকাদারি প্রতিঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড বলছে অর্থ সংকটের কারণে প্রায় ৪০,০০০ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ সময়মত শেষ করাটাই বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। +text: প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দলটির নেতারা বলেছেন, দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে ক্যাসিনো বাণিজ্য এবং টেন্ডারবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে যুবলীগসহ তাদের কয়েকটি সহযোগী সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতা গ্রেফতার হয়েছেন। এই পটভূমিতে বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে সহযোগী সংগঠনগুলোতে নতুন নেতৃত্ব আনার জন্য নভেম্বরে কাউন্সিল করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতারা উল্লেখ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের দলের সভানেত্রী হিসেবে এবার অনেকে বেশি যাচাই করে সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতৃত্ব বাছাই করবেন বলে তাদের ধারণা। তবে মুল দলের নেতৃত্ব আইন অনুযায়ী সহযোগী বা ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর নেতৃত্ব বাছাই করতে পারেন কিনা- এই প্রশ্ন এখন অনেকে তুলছেন। 'শুদ্ধি অভিযান' চাঁদাবাজির অভিযোগে ছাত্রলীগের শীর্ষ দু'জন নেতাকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো বাণিজ্য এবং টেন্ডারবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে যুবলীগ এবং কৃষক লীগের কয়েকজন নেতা গ্রেফতার হয়েছে। আরও যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে, তাদের ব্যাপারেও কঠোর অবস্থানের কথা তুলে ধরা হচ্ছে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে। কিন্তু আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলো ভাবমূর্তি প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এসব সংগঠনের সাথে মুল দলের সম্পর্ক নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। এমন প্রেক্ষাপটে সংগঠনগুলোর বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে নতুন নেতৃত্ব আনার কথা বলা হচ্ছে। আরো পড়ুন: শেখ হাসিনা কেন হঠাৎ 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে' সজাগ হলেন 'শুদ্ধি অভিযান': কীভাবে দেখছে আওয়ামী লীগ কর্মীরা? দুর্নীতিবিরোধী অভিযান কি হঠাৎ করেই থেমে গেল? শেখ হাসিনাঃ ওয়ান ইলেভেন হবে না, আমরাই ব্যবস্থা নেব ঢাকায় ক্যাসিনোতে র‍্যাবের অভিযান আওয়ামী লীগের একটি সহযোগী সংগঠন যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী নাজমা আকতার বলছিলেন, এখনকার পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে তাদের মুল দলের নেত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহযোগী সংগঠনগুলো ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। "কিছু বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে বিধায় কিন্তু আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই সংগঠনগুলোর ভিতরে যারা অন্যায়গুলো করেছে বা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তাদের বিচারের সম্মুখীন করছেন।এবং সহযোগী সংগঠনগুলোকে আবার ঢেলে সাজানোর চিন্তা করছেন। চারটি সহযোগী সংগঠনের যে কাউন্সিল হতে যাচ্ছে, সেগুলোর নেতৃত্বে বিশাল পরিবর্তন আপনারা দেখবেন।এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।" তিনি আরও বলেছেন, "আমাদের নেত্রী যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন। তিনি নিজে নেতৃত্ব যাচাই বাছাই করবেন।উনি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে এবং উনার নিজস্ব কিছু উইং আছে, এগুলো কাজে লাগিয়ে তিনি তথ্য সংগ্রহ করে যাকে সভাপতি-সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দেবেন, তাদের ক্ষেত্রে পূর্বের তুলনায় বেশি যাচাই করবেন আরকি।" 'ভাবমূর্তি সংকটে নেতৃত্ব পরিবর্তনের চিন্তা' যে সংগঠনগুলোর নেতৃত্ব বিতর্কের মুখে পড়েছে বা বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে, এখন এই সহযোগীদের কাউন্সিল করে নেতৃত্ব পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগ। যুবলীগ,কৃষকলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, এবং শ্রমিক লীগ- এই চারটি সংগঠনের কাউন্সিল হবে নভেম্বর মাসে। এদিকে, ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে যুবলীগের কয়েকজন ধরার পরার পর সংগঠনটির চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীও ব্যাংক হিসাব জব্দ এবং তার বিদেশ যাত���রা নিষিদ্ধ করাসহ কিছু ব্যবস্থা নিতে দেখা গেছে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: বিজিবি-বিএসএফ গোলাগুলি, বিএসএফ সৈন্য 'নিহত' বাংলা ক্যালেন্ডারে আবারো পরিবর্তন আনলো বাংলাদেশ 'বাবার মৃতদেহ বাংলাদেশে পাঠান, আমরা নেব না' ট্রাম্পের চিঠি ‘ডাস্টবিনে ফেলে দিলেন' এরদোয়ান দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী যুবলীগের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে কাউন্সিল সামনে রেখে যুবলীগের নেতারা রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করবেন। সেই সাক্ষাতে সংগঠনটির চেয়ারম্যানসহ বিতর্কিতদের নেয়া হচ্ছে না। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, তাদের নেত্রী স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতৃত্ব চাইছেন, সেটা অনুভব করে সহযোগী সংগঠনগুলোর কাউন্সিলে প্রতিনিধিরা নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন বলে তারা মনে করেন। "বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার যে চিন্তা এবং দৃষ্টিভঙ্গি, সেটা হচ্ছে, স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কোনো অনৈতিক কাজে জড়িত থাকা যাবে না, এমন নেতৃত্ব তিনি চান। কাউন্সিলররা নেত্রীর চিন্তা বিবেচনায় নিয়ে নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।" ছাত্রলীগ এবং শ্রমিক লীগকে আওয়ামী লীগ তাদের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন হিসেবে দেখে থাকে। তাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এই দু'টি সংগঠনের স্বাধীনভাবে কাজ করার কথা। সেজন্য সম্প্রতি ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে সরিয়ে দেয়ার বিষয়টি শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে আলোচনা করেছেন। কিন্তু তাদের পদত্যাগ করতে বলার পর তারা সেটা করেছেন-এই বিষয়টি দৃশ্যমান। যুবলীগসহ ৭টি সহযোগী সংগঠনকে স্বীকৃতি দেয় আওয়ামী লীগ। এই সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতৃত্ব কাউন্সিল নির্বাচন করার কথা বলা হয়। তবে কার্যত এসব সংগঠনের নেতৃত্ব ঠিক করার দায়িত্ব দেয়া হয় মুল দলের শীর্ষ নেতৃত্বের ওপর। সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের গবেষক দিলীপ কুমার সরকার বলছিলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী দলগুলো সহযোগী বা ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। কিন্তু তা মানা হচ্ছে না বলে তারা গবেষণায় পাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন, তারা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সাথে সংগতি রেখে সংগঠনগুলো গঠনতন্ত্র সংশোধন করেছেন। সেগুলো মেনেই তারা সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাদের যুব সংগঠন যুবলীগসহ সহযো���ী সংগঠনগুলো ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে। +text: শিশুর একজিমা সারাতে স্নানের তেল তেমন কাজে আসেনা। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুর ত্বক ঠিক করে তুলতে এই তেল তেমন কাজে আসেনা। যুক্তরাজ্যের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমনটি জানা যায়। দেশটিতে একজিমার চিকিৎসা করাতে যে খরচ হয় তার আনুমানিক তিনভাগের একভাগ খরচ হয় ইমোলিয়েন্টযুক্ত বাথ অ্যাডিটিভস ব্যবহার করলে। তবে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল বা বিএমজে-তে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে, এই চর্মরোগের চিকিৎসায় বাথ ওয়েল ব্যবহারের কোন ক্লিনিক্যাল সুবিধার, প্রমাণ মেলেনি। এ অবস্থায় জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিবছর এই অ্যাডিটিভ বাবদ যে ২ কোটি ৩০ লাখ পাউন্ড ব্যয় করছে সেটা এখন অন্য খাতে ব্যয় করা উচিত হবে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। একজিমা শিশু থেকে শুরু করে বড়দের একটি সাধারণ চর্মরোগ বা ত্বকের প্রদাহ। যা এক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এর চিকিৎসায় অনেকেই ইমোলিয়েন্ট ব্যবহার করেন। এই ইমোলিয়েন্ট মূলত তিনটি রূপে পাওয়া যায়। সেগুলো হলো- লিভ অন ইমোলিয়েন্ট, সাবানের বিকল্প পণ্য এবং বাথ এডিটিভসে। একজিমার চিকিৎসায় এগুলো একটির সঙ্গে আরেকটি সমন্বয় করে ব্যবহারের কথাও বলা হয়েছে। একজিমা সারাতে লিভ অন ইমোলিয়েন্ট ও সাবানের বিকল্প পণ্যের কার্যকারিতার প্রমান পাওয়া গেলেও বাথ ওয়েলের এডিটিভ কতোটা ভালো কাজ করে সেটা নিয়ে এখন পর্যন্ত বড় ধরণের কোন গবেষণা হয়নি। এমনটাই জানান বিএমজে সম্পাদক। এ বিষয়ে পরীক্ষার জন্য ইংল্যান্ড ও ওয়েলস থেকে একজিমায় আক্রান্ত ১ থেকে ১১ বছর বয়সী ৪৮২জন শিশুকে বাছাই করা হয়। এবং তাদের ভাগ করা হয় দুটি দলে এরমধ্যে একটি দলকে বাথ ইমোলিয়েন্ট ব্যবহার করতে দেয়া হয়। যেটা অন্য দলকে দেয়া হয়নি। তারা একজিমা চিকিৎসার জন্য নিজেদের স্বাভাবিক রুটিন মেনে চলছিলো। প্রদাহ ও চুলকানি প্রতিরোধে নিয়মিত ব্যবহার করছিলো লিভ অন ইমোলিয়েন্ট এবং স্টেরোয়েডযুক্ত মলম। লিভ অন ইমোলিয়েন্ট এবং বিকল্প সাবান শিশুর একজিমা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। টানা ১৬ সপ্তাহের ওই পরীক্ষায় দুটি দলের মধ্যে উল্লেখ করার মতো কোন পার্থক্য দেখা যায়নি। এক বছরের মাথায় একজিমা কতোটা তীব্র হয়েছে, সেটা কতোখানি ছড়িয়েছে এবং এতে জীবনমানে কোন পরিবর্তন এসেছে কিনা, সেইসঙ্গে কাদের চিকিৎসা পদ্ধতি কতোটা সাশ্রয়ী এই ���ানদণ্ডগুলোতেও দুই দলের মধ্যে বড় কোন পার্থক্য পাওয়া যায়নি। সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাইমারি কেয়ার গবেষণার সহযোগী অধ্যাপক ড. মারিয়াম সান্টের এই জরিপটি পরিচালনা করেছেন। তিনি সবাইকে লিভ অন ইমোলিয়েন্ট এবং বিকল্প সাবানের ব্যবহার চালিয়ে যেতে বললেও বাথ এডিটিভসকে অপচয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, "একজিমার ক্ষেত্রে কোন চিকিৎসা সবচেয়ে কার্যকর এবং কোন উপাদান ভালো কাজ করে এটা জানতে পারলে পরিবারগুলোর বাড়তি ঝামেলা এড়াতে পারবে। এছাড়া জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থারও টাকা বেঁচে যাবে। আসলে বাথ এডিটিভস পানিতে ফেলে অপচয় করা ছাড়া আর কিছু নয়।'' নিউক্যাসেলের রয়েল ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ড. মার্টিন ওয়ার্ড প্লাট এই জরিপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন না। তবে তিনিও মনে করেন, পরীক্ষায় যে যৌক্তিক ফলাফল বেরিয়ে এসেছে তা আমলে নিয়ে জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থার উচিত হবে তাদের অর্থ অন্য চিকিৎসা খাতে ব্যয় করা। তিনি বলেন, "গবেষণার মানে এই নয় যে, বাথ এডিটিভস বাজারে রাখাই যাবেনা। যারা এটি নিজের ইচ্ছায় একবার ব্যবহার করে দেখতে চান তাদেরকে সেই সুযোগ দিতে হবে তবে সেটা যেন অবশ্যই প্রেসক্রাইব করা থাকে।" এতে এই অকার্যকর উপাদানের পেছনে অর্থ খরচ করার প্রবণতা কমে যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তবে প্রেসক্রিপশনে এই উপাদানটি না লিখতে এবং এর জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ অন্য কোথাও খরচ করার ব্যাপারে আরেকটি মামলা চলায় তিনি স্বস্তি প্রকাশ করেন। আরো পড়ুন: দিনে দিনে বুড়িয়ে যাচ্ছে ১১ বছরের নীতু 'দিনে পাঁচবার যৌনমিলনও যথেষ্ট ছিল না' জাতীয় একজিমা সোসাইটির এন্ড্রু প্রক্টর জানান, ইমোলিয়েন্ট নিয়ে বিষদ গবেষণায় দেখা গেছে, একজিমা আক্রান্তদের নিয়মিত ত্বকের যত্নে ইমোলিয়েন্ট বেশ কার্যকর ও নিরাপদ। অনেকে জানিয়েছেন গোসলের সময় ইমোলিয়েন্টের ব্যবহার একজিমা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। তিনি বলেন, "প্রতিনিয়ত লাখ লাখ শিশু ও তরুণ এই রোগে আক্রান্ত হলেও এর চিকিৎসার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত তেমন কোন গবেষণা হয়নি। তারপরও যেটুকু জানা গেছে তা একজিমা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবে। " পাঁচ বছরের নীচে শিশুদের সপ্তাহে পাঁচদিন এই বাথ এডিটিভিস দিয়ে গোসল করালে যে ছোটখাট উপকার হবেনা, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়নি জরিপটি। এই গবেষণার সীমাবদ্ধতা হচ্ছে এখানে শুধুমাত্র বাথ এডিটিভস অন্যান্য চিকিৎসায় কেমন কাজে লাগে সেটা তুলে ধরা হয়েছে। এটি আলাদাভাবে কতোটা কার্যকর সেটা তুলে ধরা হয়নি। তবে ড. ওয়ার্ড প্লাটের মতে এই বাথ এডিটিভ যেহেতু চিকিৎসাক্ষেত্রে কার্যকারিতার প্রমাণ দিতে পারেনি। তাই আলাদাভাবেও এর কাজ করার সম্ভাবনা নেই। সাধারণত শিশুর নরম ত্বকে একজিমার মতো চর্মরোগ দেখা দিলে তা সারিয়ে তুলতে অনেকেই শিশুর গোসলের পানিতে স্নানের তেল ব্যবহার করেন। +text: নগরীর ট্রাফিক জ্যাম, বাতাসের মান, বিশুদ্ধ পানির অভাব, ইভিটিজিংসহ আরও কিছু সমস্যা বিষণ্ণতার কারণ হিসেবে গবেষণায় উঠে এসেছে এছাড়া মোট জনগোষ্ঠীর ৪৪শতাংশই বিষণ্ণতায় ভুগছে। গবেষণাটি চালায় বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা বিআইডিএস। কিন্তু এতো মানুষের বিষণ্ণতায় ভোগার কারণ কি? জবাবে বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড: এস এম জুলফিকার আলী বিবিসি বাংলাকে বলছেন এর বড় কারণই স্বাস্থ্য সম্পর্কিত। "এ বিষণ্ণতার বড় কারণই হতে পারে অসুস্থতা। এছাড়া ১৭% দরিদ্র। অর্থনৈতিক কারণে তাদের অনেকে বস্তিতে থাকে। বসবাসের সংস্থান নেই অনেকের"। এছাড়া নগরীর ট্রাফিক জ্যাম, বাতাসের মান, বিশুদ্ধ পানির অভাব, ইভিটিজিংসহ আরও কিছু সমস্যা বিষণ্ণতার কারণ হিসেবে গবেষণায় উঠে এসেছে বলে বলছেন মিস্টার আলী। তিনি বলেন মূলত চারটি প্রধান কারণ পাওয়া গেছে যেগুলো মানুষের ওপর চরম মানসিক চাপ তৈরি করছে। এগুলো হলো: ১. অসুস্থতায় ভোগা ২. দারিদ্র্য ৩. জীবনযাত্রার মান ও দৈনন্দিন জীবনের সমস্যার কারণে ৪. সব কিছু মিলিয়ে কীভাবে বুঝবেন আপনি বিষণ্ণতায় আক্রান্ত? শরীরচর্চায় মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় হ্যাকাররা ভবিষ্যতে আপনার স্মৃতি চুরি করতে পারবে এর সমাধান কোথায়: সাধারণত বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়ার সুযোগ থাকে এবং অনেকেই এজন্য চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন। কিন্তু সেটি আক্রান্ত হওয়ার পর কিভাবে সুস্থ হওয়া যায় তার একটি উপায়। ড: জুলফিকার আলী বলছেন মানুষ যেনো বিষণ্ণতার মতো সমস্যায় আক্রান্ত না হয় সেটিও তারা তাদের গবেষণায় দেখার চেষ্টা করেছেন। যানজট ঢাকার মানুষের মাঝে মানসিক চাপের অন্যতম কারণ। "এটি ঠিক শহরে মানুষ যেসব কারণে বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হচ্ছে সেগুলোর সব রাতারাতি সমাধান সম্ভব না, তবে এমন কিছু পদক্ষেপ নেয়া যায় যা মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে সহজ করে তুলবে"। যেমন যানজট প্রতিনিয়ত মানুষকে মানসিক চাপে ফেলছে কিন্তু রাতারাতি রাস্তাঘাট, ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল করে এ সমস্যার সমাধান করা যাবেনা। এমন ক্ষেত্রে কার্যকর হতে পারে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা উন্নত করা যার মাধ্যমে যানজটের প্রকোপ ৩০/৪০ভাগ পর্যন্ত কমিয়ে আনা সম্ভব। আর সেটি হলে সার্বিক পরিস্থিতিতে প্রভাব পড়বে যা মানুষের মানসিক চাপ কমিয়ে আনতে ভূমিকা রাখবে, বলছিলেন মিস্টার আলী। আবার হাসপাতালের ক্ষেত্রে বিদ্যমান অবকাঠামোর ভেতরেই সেবাকে আরও অনেক খানি উন্নত বা এগিয়ে নেয়ার সুযোগ আছে বলে মনে করেন এই গবেষক। বিষণ্ণতা কমিয়ে আনতে তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া উচিত বলে মনে করে তিনি। এগুলো হলো: ১. প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে বা যাতে কার্যকর হয় তা নিশ্চিত করতে হবে যেমন ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম খুবই দুর্বল, এটা ঠিক হলে যানজট অনেকাংশে কমিয়ে আনা যাবে। ২. নীচের দিকে জনগোষ্ঠী অর্থাৎ দরিদ্র বা প্রান্তিক জনগোষ্ঠী - তারা যাতে প্রতিষ্ঠানগুলোতে বেশি সুযোগ পায়। এখন সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের সুযোগ কম। এই বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর সহজ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ৩. টার্গেটেড ইন্টারভেনশন—সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি শহরেও থাকা উচিত। যেমন বায়ু দূষণের মতো সমস্যা ব্যবস্থাপনা ও রেগুলেশনের মাধ্যমে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। ইটভাটার ক্ষেত্রে কিংবা যেসব গাড়ীতে কালো ধোঁয়া বা শিল্প বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ জরুরি। গবেষণায় উঠে আসা বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য: ১. ঢাকায় অর্থ উপার্জনের সবচেয়ে বেশি থাকা সত্ত্বেও এখানেও অনেক দরিদ্র আছে ২. ঢাকার মাত্র চার ভাগের একভাগের নিজস্ব বসবাসের জায়গা আছে ৩. ক্ষুদ্র পেশাজীবী বা বেতনভুক্ত চাকুরেরাই পেশাজীবী গ্রুপগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করছে ৪. অভিবাসন প্রবণতায় পরিবর্তন এসেছে। এখন উত্তরাঞ্চল থেকে বেশি লোক ঢাকায় আসছে ৫. ট্রাফিক জ্যাম, বায়ু দূষণ, বিশুদ্ধ পানির অভাব ও বাজে রাস্তাঘাট নগরবাসীর বড় সমস্যা ৬. আবার এসব অনেক অসুবিধা সত্ত্বেও মানুষ তেমন অসুখী নয় কারণ কাজের সুযোগের পাশাপাশি ঢাকাতেই শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা বেশি আছে ৭. অন্যদিকে শিক্ষা নিয়েও উদ্বেগ আছে মানসিক চাপ নাকি বিষণ্ণতা: মনোবিদ কী বলেন? মনোবিদ মেখলা সরকার বিবিসিকে বলছেন অন��ক কিছুই মানুষের মধ্যে সাময়িক মানসিক চাপ তৈরি করতে কিন্তু সেগুলোকে বিষণ্ণতা বলা ঠিক হবেনা। " বিষণ্ণতা একটি রোগ। মানুষ নানা কারণে চাপ বোধ করতে পারে। সেটি যদি তার জীবনযাত্রা বা দৈনন্দিন জীবনকে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত না করে তাহলে সেটি রোগ নয়। আর মানসিক চাপ মোকাবেলার ক্ষমতা মানুষের মধ্যে যত বেশি থাকবে সেটি তার জন্য ততই ভালো"। তিনি দুটি কারণে বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হতে পারে : একটি হলো শারীরিক অন্তর্গত কারণ আর অন্যটি হলো বাহ্যিক পরিবেশ। "এখন নিয়মিত ট্রাফিক জ্যামে পড়া, বা অসুস্থতায় ভোগা কিংবা অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না হলে মানুষ মানসিক চাপে ভুগতে পারে। তবে এ থেকে উত্তরণের চেষ্টাও তার থাকে। রাষ্ট্র বা সমাজে সবকিছু মনমতো হয়না। কিন্তু মানুষ সে চাপ মোকাবেলা করেই এগিয়ে যায়। তাই মানসিক চাপে থাকা মানেই অসুস্থতা নয়"। তবে ক্রমাগত মানসিক চাপ যদিও কারও কাজে কর্মে ব্যাঘাত ঘটায় মারাত্মকভাবে বা যদি তার উৎপাদনশীলতা কমে যায় বা তার আচরণে বড় ধরনের পরিবর্তন বা সে যদি নিজেকে সব কিছু থেকে গুটিয়ে নেয় তাহলে তা অবশ্যই উদ্বেগের কারণ হতে পারে বলে জানান তিনি। চলতি বছরের জুন-জুলাই মাসে ঢাকায় প্রায় সাড়ে বার হাজার মানুষের ওপর একটি সমীক্ষায় বেরিয়ে এসেছে যে শহরের ৬৮ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনো ভাবে অসুস্থ। +text: বিজ্ঞানীরা বলছেন মাংস খাওয়া কমিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের মাত্রা কমানো সম্ভব বিজ্ঞানীদের মতে, বিশ্বের মানুষের জীবনযাপনের ধারা এবং ঐতিহ্য-সংস্কৃতিতে আমূল পরিবর্তন আনার মাধ্যমেই কেবল পরিবেশে কার্বন নি:সরণের মাত্রা কমিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করা সম্ভব। আর কার্বন নি:সরণ কমাতে প্রচলিত নানা ধরণের দৈনন্দিন অভ্যাস পরিবর্তনের পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসেও ব্যাপক পরিবর্তন আনার সুপারিশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। মূলত, মাংস খাওয়ার হার বিপুল পরিমাণে কমিয়ে আনতে তাগিদ দিচ্ছেন তারা। মাংস উৎপাদনকালে পরিবেশে উচ্চ পরিমাণে কার্বন নি:সৃত হয়, কাজেই পরিবেশ সংরক্ষণে খাদ্যতালিকায় মাংসের উপস্থিতির হার কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা বলছেন খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনে মানুষকে অনুপ্রাণিত করতে শুধু বেসরকারি প্রচারণা যথেষ্ট নয়, সচেতনতা তৈরি করতে হবে সরকারের পক্ষ থেকেও। মাংস উৎপ��দনে পরিবেশে বিপুল পরিমাণে কার্বন নি:সরণ হয় বলে বলছেন পরিবেশবিদরা কিন্তু সরকার মানুষকে মাংসের মত সুস্বাদু এবং জনপ্রিয় খাওয়া থেকে বিরত থাকার উপদেশ দিলে কি তা সরকারের জনপ্রিয়তায় প্রভাব ফেলতে পারে? যুক্তরাজ্যের জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রী ক্লেয়ার পেরি মনে করেন জনগণকে পরিবেশ বান্ধব খাদ্যাভ্যাস তৈরি করার উপদেশ দেয়ার দায়িত্ব সরকারের নয়। জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রীর এই মন্তব্যের জন্য পরিবেশবাদী সংস্থা 'ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ' মিজ. পেরির কঠোর সমালোচনা করেছে। সংস্থাটি মনে করে এই জটিল সমস্যা সমাধানে নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে। মন্ত্রী ক্লেয়ার পেরি নিজেও জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। তবে তিনি মানুষের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় হস্তক্ষেপ করতে নারাজ। মিজ. পেরি বলেন, "একজন ব্যক্তি বা পরিবার তাদের খাবারের তালিকায় কী রাখবে, সেবিষয়ে নাক গলানো আমাদের উচিৎ নয় বলেই আমি মনে করি।" "সারাদিন কঠোর পরিশ্রম শেষে একজন যদি মাংসের স্টেক খেতে চায়, তাকে নিষেধ করার আমি কে?" জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা করতে মানুষের মাংস গ্রহণের মাত্রা কমিয়ে আনা প্রয়োজন - বিজ্ঞানীদের এই বক্তব্যকে অস্বীকার না করলেও এব্যাপারে পুরোপুরি সম্মতও নন মিজ. পেরি। রাজনৈতিক স্বার্থ, না নৈতিক দায়িত্ব? পরিবেশবাদী সংস্থা 'ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থের' ক্রেইগ বেনেট বলেন, "এটা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে পরিবেশ ও জলবায়ুর দূষণ রোধে সবচেয়ে দ্রুত কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে যেসব পদ্ধতি, মাংস খাওয়া কমানো সেগুলোর মধ্যে অন্যতম।" মাংস খাওয়া কমিয়ে দেয়ার বিষয়ে বিজ্ঞানীদের সুপারিশকে যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে বিবেচনা না করায় জলবায়ু মন্ত্রী 'দায়িত্বে অবহেলা' করছেন বলেও মন্তব্য করেছে 'ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ'। No more beef? Five things you can do to help stop rising global temperatures "মাংস খাওয়া কমিয়ে দেয়া মানুষের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী এবং এর ফলে চাষাবাদযোগ্য জমির পরিমাণ বাড়তে পারে", বলেন মি. বেনেট। মি. বেনেট মনে করেন এবিষয়ে মানুষের মনোভাব পরিবর্তনে শুধু পরিবেশবাদী সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে সচেতনতা তৈরি যথেষ্ট নয়, এগিয়ে আসতে হবে সরকারকেও। তার মতে, এবিষয়ে সরকার বিশেষ তথ্য-প্রচারণা অভিযান পরিচালনা করার পাশাপাশি স্কুল ও হাসপাতালগুলোর খাবারের তালিকা পরিবর্তন এ���ং আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করতে পারে। তবে জলবায়ু মন্ত্রী মিজ. পেরি বলেন, "মানুষের খাদ্যাভ্যাসে নাক না গলিয়ে প্রযুক্তির উন্নয়নে আমাদের মনোনিবেশ করা প্রয়োজন।" পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগিয়েও জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব কমানো যায় বলে মনে করেন মিজ. পেরি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুস্থ জীবন এবং সুন্দর পৃথিবী নিশ্চিত করতে প্রত্যেক ব্যক্তিকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ভূমিকা রাখতে হবে - এমনটা অনেকদিন থেকেই বলে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। সে লক্ষ্যে মানুষকে ছোট গাড়ি ব্যবহার করা, যাতায়াতে সাইকেলের ব্যবহার বাড়ানো ও হাঁটা, কম বিমান-ভ্রমণ করা, আধুনিক ফ্যাশন-পণ্য কম ব্যবহার করা, চামড়াজাত পণ্যের ব্যবহার বন্ধ করা...এবং মাংস খাওয়া কমানোর মত পদক্ষেপ নিতে উপদেশ দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন মানুষ চিন্তাধারায় ও মনোভাবে পরিবর্তন আনলে টেকসই পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন সম্ভব। তাদের মতে, সরকার যদি এই বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার গুরুত্ব বুঝতে না পারে তাহলে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি ঠেকানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পরবে। সাম্প্রতিক এক গবেষণার ওপর ভিত্তি করে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন যে পৃথিবীর জলবায়ু সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে মানুষকে অতিসত্বর কার্বন নি:সরণ কমানোর দিকে মনোযোগ দিতে হবে। +text: বিডিজবস ডটকমের প্রধান নির্বাহী ফাহিম মাসরুর সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার নাজমুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে জানান, "তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের স্বপক্ষে তার ফেইসবুক আইডি থেকে যথেষ্ট পরিমান সাক্ষ্য পাওয়া যায় নি।" তবে বিষয়টি নিয়ে অধিকতর তদন্ত চলছে বলে তিনি জানান। এর আগে, ফেসবুকে বিভিন্ন উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রচারের অভিযোগে দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে আটক করা হয় মি: মাসুররকে। "তার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আছে, সেগুলো এখন আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখছি। তাকে গ্রেপ্তার করা হবে কিনা সেটা নির্ভর করছে, আমরা কি পাই তার ওপর," আটকের পর বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছিলেন সাইবার ক্রাইম ইউনিটের উপকমিশনার মোহাম্মদ আলীমুজ্জামান। আরো পড়ুন: বাংলাদেশে নাগরিকত্ব বর্জন করার নিয়ম কী ভারতে ধর্ষণের দায়ে ধর্মগুরু আসারাম দোষী সাব্যস্ত মি: মাসরুরের ফেসবুক পেইজের ইন্ট্রো বা পরিচিতি বলা হয়েছে, প্রধান নির্বাহ�� ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিডিজবস ডটকম এবং আজকের ডিল। আজকের ডিল একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। ফেসবুকের কাভার ফটোতে দেখা যাচ্ছে, ষষ্ঠ জাতীয় এসএমই মেলা ২০১৮ একটি অনুষ্ঠানে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে ক্রেস্ট গ্রহণ করছেন। এছাড়া তার পেইজে দেখা যাচ্ছে তিনি প্রযুক্তি এবং নতুন উদ্যোগ বিষয়ক নানা ধরণের পোষ্ট করেন। বাংলাদেশের প্রথম চাকরি বিষয়ক ওয়েবসাইট বিডিজবস ডটকম প্রায় দেড়যুগ আগে প্রতিষ্ঠিত হয়। সাইটটিতে প্রতিদিন ১ লক্ষ ১০ হাজার ইউনিক ভিজিটর আসেন। মাসে চার কোটি মানুষ এই সাইট ভিজিট করেন। মিঃ মাসরুর দেশের সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস বেসিসের সভাপতি ছিলেন। ফেসবুকে উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রচারের অভিযোগে বাংলাদেশের প্রথম চাকরি বিষয়ক ওয়েবসাইট বিডিজবস ডটকমের প্রধান নির্বাহী ফাহিম মাসরুরকে আটকের পর ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। +text: দিল্লিতে সমঝোতায় স্বাক্ষর করছেন ভারতে নিযুক্ত ভুটান ও ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতরা ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, "বহু বছর ধরে গোপনে আলোচনা চালানোর পরই এই সমঝোতা সম্ভব হয়েছে।" ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুও টুইটারে এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে লিখেছেন, "এটা হল শান্তি সমঝোতাগুলোর বাড়তি সুফল!" মধ্যপ্রাচ্য ও আরব দুনিয়ার বিভিন্ন দেশ সম্প্রতি আমেরিকার প্রচ্ছন্ন মদতে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করা রু করেছে। তবে তার সঙ্গে এই পদক্ষেপের সরাসরি সম্পর্ক নেই বলেই মনে করা হচ্ছে। বরং এখানে ভারত একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে বলেই পর্যবেক্ষকদের ধারণা। দিল্লিতে ভূটানের রাষ্ট্রদূত ভেটসপ নামগিয়েল ১৯৪৯ সালে স্বাক্ষরিত ফ্রেন্ডশিপ ট্রিটি বা মৈত্রী চুক্তি অনুযায়ী ভূটানের পররাষ্ট্র নীতির বিষয়টি অনেকাংশেই ভারতের নিয়ন্ত্রণাধীন। তেল আভিভে ভারতীয় দূতাবাস স্থাপনের মধ্যে দিয়ে ভারত ও ইসরায়েলের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল ১৯৯২ সালের জানুয়ারিতে। তবে ভারতের প্রভাব বলয়ে থাকা ভুটানের সঙ্গে ইসরায়েলের আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক গড়ে উঠতে তার পরও প্রায় তিন দশক সময় লেগে গেল। গত আগস্ট মাস থেকে অন্তত চারটি দেশ ইসরায়েলকে কূটনৈতিকভাবে স্বীকৃ���ি দিয়েছে, যে তালিকায় সবশেষ সংযোজন ছিল মরক্কো। আর এখন এতে যুক্ত হল ভুটানও। আরও পড়তে পারেন: ইসরায়েল-ফিলিস্তিন: দ্বি-রাষ্ট্র তত্ত্বের পক্ষেই বাংলাদেশ কেন ভারতীয়দের ওপর চড়া পর্যটন কর চাপাচ্ছে ভুটান? নদীবাঁধ আর সেচের জল নিয়ে নেপাল-ভুটানও এবার ভারতের সঙ্গে সংঘাতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা অনেকেই মনে করছেন, সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্থাপনও এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। এই পটভূমিতে ভুটানের সঙ্গে সমঝোতার পর ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাবি অ্যাশকেনাজি বলেছেন, "ইসরায়েলের স্বীকৃতির পরিধি ক্রমশ বাড়ছে ও নানা দিকে বিস্তৃত হচ্ছে।" এশিয়ার সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ককে আরও গভীর করে তুলতেও এই পদক্ষেপ একটি 'মাইলফলকে'র কাজ করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। ভারতে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত রন মালকাও ভুটানের সঙ্গে সমঝোতার দিনটিকে তার দেশের জন্য এক 'ঐতিহাসিক মুহুর্ত' বলে বর্ণনা করেছেন। ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাবি অ্যাশকেনাজি তিনি শনিবারের অনুষ্ঠানের যে সব ছবি পোস্ট করেছেন, তাতে ভুটান ও ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের নানা নথিপত্র স্বাক্ষর করতে ও করমর্দন করতে দেখা যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, একাত্তরের ডিসেম্বরে প্রথম যে দেশটি বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে কূটনৈতিক স্বীকৃতি দিয়েছিল সেটি হল ভুটান। বস্তুত ভারতেরও আগে তারা বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় বলে অনেক ঐতিহাসিক জানিয়েছেন। তবে সেই সিদ্ধান্তের পেছনে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীরও অবদান ছিল বলে মনে করা হয়। বাংলাদেশ ও ইসরায়েলের মধ্যে অবশ্য আজও কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। অদূর ভবিষ্যতে তা হবে, এমন কোনও সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: সোমবার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হচ্ছে করোনাভাইরাসের টিকাদান সরকারি কর্মকর্তাদের সমাবেশ নিয়ে যা বললেন আকবর আলী খান হাসপাতালগুলো ফিরিয়ে দিল, মানুষ দুটি শেষ পর্যন্ত মরেই গেল বাংলা একাডেমির ভার্চুয়াল বইমেলার সমালোচনায় প্রকাশক ও লেখকরা এবার ইসরায়েলের সঙ্গে পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করল দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভূটান। শনিবার দিল্লিতে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে ভারতে নিযুক্ত ওই দুই দেশের রাষ্ট্রদূত পরস্পরের মধ্যে এই সংক্রান্ত নথিপত্র স্বাক্ষর করেন। +text: বাংলাদেশে আছে প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গা ���রণার্থী উল্লেখ্য মিয়ানমার সরকার এর আগে দাবি করেছিল যে, বাংলাদেশ সরকার ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন পিছিয়ে দিতে চাইছে। মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী বিবিসির বার্মিজ সার্ভিসকে বলেছেন বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সাথে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলছেন, নির্বাচনের সাথে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কোন সম্পর্ক নেই। তিনি বলছেন, "মোটেই না, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরে এই ১৫ নভেম্বর তারিখটি নির্ধারণ করা হয়েছিলো। এটার সাথে নির্বাচনের কোন সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশের জন্য তাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়াটা যুক্তিযুক্ত বলে মনে করি আমরা।" বাংলাদেশ থেকে প্রথম দফায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা ছিল ১৫ নভেম্বর, গত বৃহস্পতিবার। প্রথম দফায় দুই হাজারের কিছু বেশি রোহিঙ্গাকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিলো। মিয়ানমারের পক্ষ থেকেই তাদের যাচাই করে এই তালিকা দেয়া হয়েছে। ১৫ নভেম্বর প্রথম দিন দেড়শ জনের মতো রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে প্রক্রিয়াটি শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছিলো। কিন্তু সেটি শুরু করাই সম্ভব হয়নি। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বিবিসিকে জানিয়েছে, "আমাদের দুই রাষ্ট্রেরই সম্মতিতে ১৫ নভেম্বর ডেডলাইন নির্ধারণ করা হয়েছিলো। সেটা হয়নি কারণ যারা যাবেন তারা রাজি হয়নি। এখানে আমরা যেটা বুঝেছি যে এখানে আস্থার সংকট আছে তাদের। আমরা মিয়ানমারকে অনুরোধ করেছি এবং আবারো পুনরায় করবো এই আস্থার যায়গাটি তৈরি করতে। এবং তারা যত তাড়াতাড়ি এই কাজটি করতে পারবেন, রিপাট্রিয়েশন আমরা আবারো পুনরায় চেষ্টা করবো। পুরোপুরি এটা এখন নির্ভর করছে মিয়ানমারের উপর।" তিনি বলছেন, আস্থার সংকটই এখানে বাধার সৃষ্টি করেছে। প্রত্যাবাসিত রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করতে মিয়ানমারের তংপিয়ং লেটওয়া এলাকার অস্থায়ী ক্যাম্পে অভিবাসন কর্মকর্তাসহ নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং চিকিৎসকরা প্রস্তুত ছিলেন বলে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিলো। প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য বাংলাদেশেরও পুরোপুরি প্রস্তুতি ছিল বলে জানান মিঃ আলম। তবে সেদিন কক্সবাজারে রোহিঙ��গারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং তাদের নাগরিকত্ব প্রদান, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা সহ পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানান। এখন নতুন করে কবে প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে সেনিয়ে পরিষ্কার করে ধারনা পাওয়া যাচ্ছে না। বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন পিছিয়ে দেয়ার কোন সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। +text: বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে এগারো লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা তিনি বলেন, "রোহিঙ্গাদের অনাগ্রহের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ এক সময় কঠোর হবে। এখন তো তারা খুব সুখে আছে। কিন্তু সুখে খুব বেশিদিন থাকবে না। এরই মধ্যে টাকা-পয়সা কমছে। রোহিঙ্গাদের নিয়ে যারা কাজ করছে তারাও কঠোর হবে।" পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, নিজেদের তাগিদেই দেশে ফিরে যাওয়া উচিত রোহিঙ্গাদের। "তারা যদি ফেরত যেতে না পারে তাহলে তাদের নিজেদের সাথে সাথে তাদের সন্তানদেরও ভবিষ্যৎ অন্ধকার।" কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, "রোহিঙ্গা শিশুদের পড়ানোর দায়িত্ব নিতে পারবে না বাংলাদেশ। কারণ তাদের ভাষার কোন শিক্ষক নেই এখানে। আস্তে আস্তে তাদের পুরো প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে।" বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরুর কথা থাকলেও তাদের অনাগ্রহের কারণে তা শুরু করা যায়নি। তবে, টেকনাফে রোহিঙ্গা শিবিরের কাছে পরিবহণ প্রস্তুত রাখা হয়েছে যাতে করে কোন রোহিঙ্গা ফেরত যেতে চাইলে যাতে তাদের বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছে দেয়া যায়। আরো পড়তে পারেন: রোহিঙ্গারা কি আদৌ ফিরবে? উদ্বিগ্ন স্থানীয়রা কেমন আছেন মিয়ানমারের মুসলিম নাগরিকেরা? কাশ্মীরে শুক্রবার নামাজের পর বিক্ষোভ মিছিলের ডাক এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা। ব্যাপক প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও নিজেদের দেশে ফেরত যেতে চায়নি রোহিঙ্গারা। এর আগেও গত বছরের নভেম্বরে আরেক দফা প্রত্যাবাসনের কথা থাকলেও রোহিঙ্গাদের অনাগ্রহের কারণে সে প্রচেষ্টাও ভেস্তে যায়। এমন অবস্থায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আদৌ সম্ভব কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো। এবার বেশি আশা ছিল। কারণ চীন অনেক বেশি আগ্রহ দেখিয়েছিল, মিয়ানমারও অনেক অ্যাকোমোডেশন নিয়ে এসেছিলো।" তিনি বলেন, "কিন্তু ���েষ হল না কারণ এটা একটা প্রক্রিয়া। আজকে শুরু হয়নি, কিন্তু ভবিষ্যতে শুরু হতে পারে। এটা সব রোহিঙ্গা একসাথে যাবে তেমনটা না, কিন্তু শুরুটা আমরা করতে পারি।" রোহিঙ্গারা যাতে ফেরত না যায়, তার জন্য 'একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে' বলেও অভিযোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি অভিযোগ করেন, "রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে বিভিন্ন ধরণের প্রচারণা চলছে, ফ্লাইয়ার দিয়ে ক্যাম্পেইন চালানো হচ্ছে। এমন অবস্থায় মনে হচ্ছে যে, একটা মহল রোহিঙ্গারা যাতে না যায় তার জন্য ফন্দি-ফিকির করছে।" তবে দীর্ঘ মেয়াদে এসব 'ফন্দি-ফিকির' কাজ করবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, "বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের এখনো পর্যন্ত অনেক ভালোভাবে দেখাশুনা করেছে। কিন্তু তাদেরকে ভবিষ্যতে এভাবে রাখা সম্ভব হবে না।" "এছাড়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও সাহায্য সহযোগিতার মাত্রা কমিয়ে দিয়েছে। আগামীতে আরো কমবে। এরইমধ্যে আড়াই হাজার কোটি টাকা নিজেদের পকেট থেকে দিয়েছি। আর তেমন সম্ভব না।" পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে ১৩০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা কাজ করছে। এরা বিভিন্ন ধরণের বায়নার কথাও তুলেছে। তারা বলছে যে, রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার আগে রক্ষা করতে হবে। ২২শে জুলাই প্রত্যাবাসন শুরুর কথা থাকলেও রোহিঙ্গাদের অনাগ্রহে তা ভেস্তে যায় রোহিঙ্গাদের দাবি নিয়ে কী করতে পারে বাংলাদেশ? মিয়ানমারে স্বেচ্ছায় ফেরত যেতে বিভিন্ন ধরণের দাবি তুলে ধরেছে রোহিঙ্গারা। যার মধ্যে রয়েছে - নাগরিকত্বের অধিকার, নিজেদের বাড়িতে ফেরত যাওয়া, নির্যাতনকারীরে বিচারসহ বিভিন্ন ধরণের শর্ত। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফেরত নেয়ার পর রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা এবং মুক্ত চলাচল নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছে মিয়ানমার। নিপীড়নকারীদের বিচারের দাবি পূরণ করা বাংলাদেশের আওতার বাইরে বলেও জানান মি. মোমেন। তিনি বলেন, "তারা তাদের নিজেদের দেশে গেলে দাবি দাওয়া আদায় করতে পারবে। বাংলাদেশের থেকে এই দাবি দাওয়া আদায় করা সম্ভব না।" "মিয়ানমার বলেনি যে রোহিঙ্গাদেরকে নাগরিকত্ব দেয়া হবে। তারা বলেছে যে, এটা একটা প্রক্রিয়া। প্রথমে তাদেরকে কার্ড দেয়া হবে। পরে মিয়ানমারের শাসনতন্ত্রের আওতায় তারা নাগরিকত্ব পাবে," বলেন তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মি. মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় বিশ্বের অনেক দেশ�� বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। তিনি বলেন, " এক সময় চীন মিয়ানমারের পক্ষে ছিল। এখন চীনই জোর করছে। চীনের রাষ্ট্রপতি বলছেন যে তারা আমাদের সাথে একমত যে রোহিঙ্গাদের ফেরত যেতে হবে।" "তারাই [চীন] চেষ্টা করে এ অবস্থায় নিয়ে এসেছে। অন্যসব রাষ্ট্রও আমাদের সঙ্গে আছে। এখন মিয়ানমারকে সেটা অনুধাবন করতে হবে। সমস্যা তৈরি করেছে মিয়ানমার, সমস্যার সমাধানও তাদেরকেই করতে হবে।" মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের দাবি-দাওয়া মানতে বাধ্য করাতে হলে শুধু দেশটির সামরিক কর্মকর্তাদের উপর নিষেধাজ্ঞাই যথেষ্ট নয় বরং তাদের বাণিজ্যের উপরও চাপ প্রয়োগ করা উচিত বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, "আমরা আমাদের প্রচারণা সব দেশের কাছে তুলে ধরবো। আমরা তাদের মানবতার খাতিরে আশ্রয় দিয়েছি। গণহত্যা বন্ধ করতে আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু আমরা এটা দীর্ঘমেয়াদে চালিয়ে নিতে পারবো না।" পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "আমরা মিয়ানমারকে বলেছি যে, তোমাদের প্রতি রোহিঙ্গাদের বিশ্বাস নেই।" "আমরা বলেছি, রোহিঙ্গাদের যে নেতা বা মাঝি আছে তাদের একশ জনকে নিয়ে গিয়ে মিয়ানমারের পরিস্থিতি দেখানো উচিত যে তারা কতটা প্রস্তুত, তাহলে তারা বিশ্বাস ফিরে পাবে। মিয়ানমার এখনো সেটা করেনি। তবে তাদের এটা করা উচিত," বলছেন তিনি। রোহিঙ্গাদের প্রতি ভবিষ্যতে কঠোর হবে বাংলাদেশ। বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটা জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। +text: ম্যালেরিয়া ছড়ায় মশাবাহিত একরকম পরজীবী জীবাণুর মাধ্যমে এর ফলে উদ্বেগ দেয়া দিয়েছে যে প্রাণঘাতী এই রোগটি আবার জোরেশোরে ফিরে আসতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গত দুই দশকে ম্যালেরিয়ায় সংক্রমণের হার কমে গেলেও, এখন আবার ফিরে আসতে শুরু করেছে। এর পেছনে কি কারণ থাকতে পারে - তা ব্যাখ্যা করে বাংলাদেশে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের ম্যালেরিয়া বিভাগের পরিচালক ড. আকরামুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, জলবায়ু ও পরিবেশগত পরিবর্তনের ফলে ম্যালেরিয়ার জীবাণুবাহী মশার সংখ্যাবৃদ্ধি এর একটা বড় কারণ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে চট্টগ্রামের পার্বত্য জেলাগুলো সহ ১৩টি জেলায় ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব আছে। তার কথায়, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান এবং কক্সবাজারের কিছু অংশে পরিবেশগত পরিবর্তনের জন্য মশার বংশবিস্তার বৃদ্ধি পেয়েছে। ড. ���সলাম বলেন, ২০১৪ সাল থেকে বান্দরবান ও রাঙ্গামাটিতে ম্যালেরিয়া আক্রান্তর সংখ্যা বেড়েছে। মিয়ানমার সীমান্তসংলগ্ন এলাকাগুলোতেও ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব বেশি। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দুর্ভাবনায় ভারত? একজনের মুখ কেটে দু'বার বসানো হলো অন্যজনের মুখ প্রতিদিন অতিরিক্ত মদ্যপান করলে কমতে পারে আয়ু ইউরোপে কিভাবে 'দাসপ্রথা' চালাচ্ছে উত্তর কোরিয়া ? বাংলাদেশে অনলাইনে যৌন ব্যবসা, ব্যবসায়ী আটক ম্যালেরিয়ার জীবাণুবাহী মশা গত বছরের আগের বছর অর্থাৎ ২০১৬ সালে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই লোকই ছিলেন ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিতে। উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের বিভিন্ন জায়গা, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত লোকের সংখ্যা বেড়েছে। অবশ্য অন্যান্য অঞ্চলে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব কমেছে বা একই রকম আছে। ধনকুবের এবং সমাজসেবী বিল গেটস কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে লন্ডনে আসা নেতাদের প্রতি আহবান জানাচ্ছেন যেন তারা ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আরো অর্থ দেবার অঙ্গীকার করেন। মি. গেটস এবং অন্য দাতারা মিলে প্রায় ৪০০ কোটি ডলারের নতুন তহবিল গঠনের ঘোষণা দিচ্ছেন - যার লক্ষ্য হবে ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনা। মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস বিবিসিকে বলেছেন, মশারিকে আরো উন্নত এবং দীর্ঘমেয়াদে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধী ওষুধ আবিষ্কারে এই অর্থ খরচে করা হবে। লন্ডনে আন্তর্জাতিক এক ম্যালেরিয়া সম্মেলনের আগে তিনি একথা বলেন। আরো পড়ুন: বাংলাদেশে ম্যালেরিয়ার বেশির ভাগই পার্বত্য এলাকায় গত ১০ বছরের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো বিশ্বে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়া লোকের সংখ্যা কমছে না। +text: ডায়মন্ড প্রিন্সেস তবে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় জাপানের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা ও বিতর্ক বাড়ছে। এর মধ্যে যে জাহাজটিতে শত শত মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, সেই ডায়মন্ড প্রিন্সেস পরিদর্শন করেছেন জাপানের একজন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, তিনি বলেছেন জাহাজের অবস্থা 'ভীষণ বিশৃঙ্খল'। এদিকে মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ভাইরাস ঠেকাতে নেয়া ব্যবস্থা 'হয়তো পর্যাপ্ত ছিল না'। সেই সঙ্গে ডায়মন্ড প্রিন্সেসের যাত্রীরাও বর���ণনা করেছেন, জাহাজে কোয়ারেন্টিন থাকাকালে কী কঠিন পরিস্থিতি পাড়ি দিতে হয়েছে তাদের। ভাইরাসে আক্রান্ত নন এমন মানুষেরা বাড়ি ফিরছেন এ পর্যন্ত ডায়মন্ড প্রিন্সেসের অন্তত ৬২১জন যাত্রী এবং ক্রু কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বলা হচ্ছে, চীনের বাইরে একক কোনো জায়গায় করোনাভাইরাস সংক্রমিত হবার এটি সর্বোচ্চ সংখ্যা। জাহাজটিতে মোট তিন হাজার ৭০০ যাত্রী ছিলেন। প্রায় দু সপ্তাহ ধরে জাহাজটি জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে নোঙ্গর করে আছে। জাহাজের ভেতরে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হবার হার বেড়ে যাওয়ায় বেশ কয়েকটি দেশ তাদের নাগরিকদের ইতিমধ্যেই সেখান থেকে সরিয়ে নিয়েছে। কয়েকদিন আগে কয়েক শত মার্কিন নাগরিককে জাহাজটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে নেয়া হয়, এবং তাদের সেখানে কোয়ারেন্টিন করা হয়। জাহাজের ব্রিটিশ যাত্রীদের যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জাহাজেই অবস্থান করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, এবং বলা হয়েছে এ সপ্তাহের শেষ নাগাদ অর্থাৎ রোববারের আগেই তাদের জন্য বিমান পাঠানো হবে। জাহাজের এক ব্রিটিশ দম্পতি যারা নিয়মিত সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে সাংবাদিকদের জাহাজের খবরাখবর পাঠাচ্ছিলেন, বুধবার জানিয়েছেন, পরীক্ষায় তাদের দুজনারই করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। জাহাজের যাত্রীদের একজন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাজ্য জাহাজটি থেকে নিজেদের যাত্রীদের ফিরিয়ে নেবার পর তাদের নতুন করে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে। যাত্রীদের নিয়ে আশংকা ডায়মন্ড প্রিন্সেসে কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করার পরও জাহাজটির যাত্রীরা ব্যাপকহারে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় বিশেষজ্ঞরা জাহাজটির নেয়া পদক্ষেপের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কেনটারো আইওয়াটা, যিনি জাপানের কোবি ইউনিভার্সিটির সংক্রামক রোগ বিভাগের একজন অধ্যাপক, তিনি জাহাজটি পরিদর্শন করে বলছেন, জাহাজে যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল, 'সংক্রমণ ঠেকাতে তা ছিল একেবারেই অপর্যাপ্ত'। জাহাজটি ঘুরে দেখার পর তিনি ইউটিউবে একটি ভিডিও পোষ্ট করেন, যাতে বলা হয়, তিনি দেখে এসেছেন কর্তৃপক্ষের নেয়া ব্যবস্থায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের, যারা সংক্রমিত হননি তাদের থেকে পুরোপুরি আলাদা করতে সক্ষম হয়নি। তিনি কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করেছেন: • জাহাজের সবুজ এলাকা ��র্থাৎ যেটি সংক্রমণ-মুক্ত এবং ভাইরাস সংক্রমিত রেড জোন—দুইটি জায়গাতেই যাত্রী এবং ক্রুরা অবাধে যাতায়াত করতেন • যাত্রীরা একসঙ্গে খাবার খেতেন এবং লিভিং কোয়ার্টার অর্থাৎ থাকার ব্যবস্থাও একসঙ্গেই ছিল • জীবাণু সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য আলাদা পোশাক পরতেন না কেউ, এমনকি মেডিকেল স্টাফরাও না • পেশাদার রোগ সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ কেউ জাহাজে ছিলেন না ভিডিওতে তিনি আরো বলেছেন, আফ্রিকায় যখন তিনি ইবোলার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে কাজ করেছিলেন, তখন তিনি অনেক বেশি নিরাপদ বোধ করেছিলেন। এসব সীমাবদ্ধতার কারণে কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থার পরও জাহাজটির যাত্রীরা ব্যাপকহারে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে শুরু করেন বলে মন্তব্য করেন প্রফেসর কেনটারো আইওয়াটা। এদিকে, মার্কিন কর্মকর্তারাও করোনাভাইরাস ঠেকাতে জাপানের নেয়া পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন। ইয়াকোহামা বন্দরে ডায়মন্ড প্রিন্সেস দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ বিভাগ সতর্কতা দিয়ে বলেছে, "কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা হয়ত সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য যথাযথ ছিল না। আর কোন উপসর্গ ছাড়াই নতুন করে সংক্রমিত হবার হার দেখে বোঝা যায় ঝুঁকিতে আছেন অনেকেই।" যদিও জাপানের কর্মকর্তারা বলছেন, বেশিরভাগ যাত্রী আক্রান্ত হয়েছেন কোয়ারেন্টিন হবার আগেই। যাত্রীরা ফিরছেন এদিকে ভাইরাসে আক্রান্ত নয় এবং যাদের মধ্যে কোনো উপসর্গও দেখা যায়নি, এরকম ৫০০ যাত্রী বুধবার থেকে ফিরতে শুরু করেছেন। জাহাজ থেকে নেমে ইয়োকোহামা বন্দরে থাকা কোচ কিংবা ট্যাক্সিতে করে তারা গন্তব্যে রওয়ানা হয়েছেন। তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবেন এখন। আরো পড়তে পারেন: নারী সেজে ইসরাইলি সেনাদের হামাসের ধোঁকা জার্মানির বারে বন্দুকধারীর গুলিতে ৮ জন নিহত খালেদা জিয়ার মুক্তির চেষ্টায় বিএনপি কেন নাজুক অবস্থানে তবে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কিছু দিন পর পর তাদের কয়েক দফা স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। যাদের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণের চিহ্ন পাওয়া যায়নি কিন্তু তারা সংক্রমণের শিকার মানুষের সাথে কেবিনে ছিলেন, এমন ব্যক্তিদের অতিরিক্ত কোয়ারেন্টিন করা হবে, কাজেই তারা এখন জাহাজ ছেড়ে বের হতে পারবেন না। ডায়মন্ড প্রিন্সেসে ৫০টিরও বেশি দেশের নাগরিক ছিলো। বিবিসি সংবাদদাতারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে এই যাত্রীরা সারাবিশ্বে ভাইরাস ছড়ানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারেন। জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে কোয়ারেন্টিন করে রাখা জাহাজটি নিয়ে ক্রমবর্ধমান বিতর্কের মধ্যেই জাহাজটির শত শত যাত্রী, যারা করোনাভাইরাস আক্রান্ত হননি, তারা বাড়ি ফিরছেন। +text: হেভি-ডিউটি ট্রাকের ওপর এ ধরণের বিশাল আকৃতির কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করা হয় শনিবার মধ্যরাতে পিয়ংইয়ংয়ের কুচকাওয়াজে প্রচুর মানুষের অংশগ্রহণে কোনো ভুল-ভ্রান্তি ছাড়াই যে চোখ ধাঁধানো কুচকাওয়াজ হয়েছে, তেমন অনুষ্ঠান আয়োজনে উত্তর কোরিয়ার জুড়ি মেলা ভার। চেয়ারম্যান কিম জং উন অনুষ্ঠানে আবেগে মোড়া একটি ভাষণ দিয়েছেন। তার দেশের সংগ্রামের ইতিহাসের কথা বলতে গিয়ে কয়েকবার তিনি চোখ মুছেছেন। কিন্তু নতুন একটি আন্ত-মহাদেশীয় দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) উন্মোচন ছিল শনিবার মধ্যরাতের জমকালো ঐ অনুষ্ঠানের প্রধান বিস্ময়। উত্তর কোরিয়ার নতুন এই আন্ত-মহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্পর্কে প্রধান যে তিনটি বিষয় জানা গেছে তা এরকম: কিমের প্রতিশ্রুত ‘কৌশলগত অস্ত্র‘ এ ধরণের ট্রাকে করে উত্তর কোরিয়া এর আগেও তাদের ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করেছে, তবে শনিবার ট্রাকের সংখ্যা ছিল বেশি দু'হাজার বিশ সালের ১লা জানুয়ারিতে কিম জং উন তার নতুন বছরের ভাষণে ঘোষণা করেছিলেন উত্তর কোরিয়া এমন সব অত্যাধুনিক অস্ত্র তৈরি করছে যা শুধুমাত্র “গুটিকয়েক আধুনিক রাষ্ট্রের হাতে রয়েছে।“ তিনি বলেছিলেন, তার সরকার 'কৌশলগত' - অর্থাৎ পারমাণবিক - অস্ত্র-সম্ভার তৈরির প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। মি. কিম সেদিন যুক্তরাষ্ট্রর সাথে তার দেশের সম্পর্কের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। তিনি বলেন, “ডিপিআরকে‘র সাথে তাদের সম্পর্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যত টালবাহানা করবে, কালক্ষেপণ করবে, গণতান্ত্রিক কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের শক্তির সামনে তারা আরো বেশি অসহায় বোধ করবে। ডিপিআরকে কল্পনার চেয়েও বেশি শক্তি সঞ্চয় করছে, এবং (সম্পর্কে) অচলাবস্থা যুক্তরাষ্ট্রকে গহ্বরের আরো গভীরে নিয়ে যাবে। “ ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার মধ্যরাতে পিয়ংইয়ংয়ে জমকালো সামরিক কুচকাওয়াজ যে পারমাণবিক মারণাস্ত্রের প্রতিশ্রুতি ১০ মাস আগে মি. কিম দিয়েছিলেন সেটাই নতুন এই আইসিবিএম, এবং এর টার্গেট যুক্তরাষ্ট্র। সম্পর্ক উন্নয়নের প্রক্রিয়া ব্যর্থ হওয়ার জেরে এমন একটি অস্ত্র অবধারিত ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নতুন হুমকি উত্তর কোরিয়া এর আগেই দুটো আইসিবিএম পরীক্ষা করেছে। ২০১৭ সালে দুই বার তারা হুয়াসং-১৪ পরীক্ষা করে। পারমানবিক বোমা বহনে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্র ১০,০০০ কিমি (৬২১৩ মাইল) দূরের লক্ষ্যবস্তু আঘাত করতে সক্ষম। তার অর্থ, পুরো পশ্চিম ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডের অর্ধেক এখন কোরীয় এই পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের আওতায়। ঐ একই বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে উত্তর কোরিয়া তাদের আরেকটি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র হুয়াসং-১৫ পরীক্ষা করে যার পাল্লা ১৩,০০০ কিলোমিটার। অর্থাৎ এটি যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডের যে কোনো স্থানে আঘাত করতে সক্ষম। আরও পড়তে পারেন: যেভাবে ধরা পড়লো উত্তর কোরিয়ার গোপন অস্ত্র ব্যবসা উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং আন কোথায়? দক্ষিণ কোরিয়ার বেলুন প্রচারণায় উত্তর কোরিয়ার ক্ষোভ শনিবার রাতে নতুন যে আইসিবিএমটি প্রদর্শন করা হয়েছে সেটির পরীক্ষা এখনও হয়নি। তবে এটিও দুই-ধাপ বিশিষ্ট তরল-জ্বালানি চালিত ক্ষেপণাস্ত্র, কিন্তু দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থে এটি হুয়াসং-১৫‘র চেয়ে এটি অনেকটাই বড়। এটির পাল্লা কত অর্থাৎ কতদূরের লক্ষ্যবস্তু এটি আঘাত করতে সক্ষম তা এর যন্ত্রের প্রযুক্তি তা না জানলে বা পরীক্ষা না করা পর্যন্ত বলা যাবেনা। কিন্তু এই নকশা দেখে উত্তর কোরিয়ার লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য পরিষ্কার বোঝা যায়: ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা বাড়ানোর কোনো প্রয়োজন তাদের আর নেই। বদলে, তারা এখন চেষ্টা করছে একটি ক্ষেপণাস্ত্রে একাধিক পারমাণবিক বোমা বসানোর প্রযুক্তির প্রয়োগ। এর সাফল্য যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য নতুন মাথাব্যথা তৈরি করবে, কারণ একটি পারমাণবিক বোমাকে প্রতিরোধের জন্য এমনিতেই একইসাথে অনেকগুলো ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়তে হয়। এখন যদি উত্তর কোরিয়া একটি ক্ষেপণাস্ত্রে একাধিক ওয়ারহেড বা বোমা স্থাপনে সক্ষম হয় তা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরো চাপে ফেলবে। উদ্বেগের আশু কারণ নতুন যে আইসিবিএম উত্তর কোরিয়া প্রদর্শন করেছে, তার নকশা দেখে ধারণা করা শক্ত যে কখন এটি পরীক্ষা করা হবে বা মোতায়েন করা হবে। তবে, যে সব ট্রাকের ওপর সেটি বহন করা হয়েছে, তা বাড়তি উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। কোনো পারমাণবিক যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার জন্য এখনও যেটি উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে দুর্বলতা তাহলো যথেষ্ট লঞ্চার বা উৎক্ষেপকের অভাব। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্যমতে, উত্তর কোরিয়ার ছয়টি লঞ্চার রয়েছে যা থেকে তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পাল্টা আঘাত আসার আগে বড়জোর ১২টি আইসিবিএম উৎক্ষেপণে সক্ষম। দু'হাজার দশ সালে উত্তর কোরিয়া গোপনে চীন থেকে ছয়টি WS51200 হেভি-ডিউটি ট্রাক আমদানি করে। তারপর তাতে হাইড্রোলিকস প্রযুক্তি প্রয়োগ করে সেগুলোকে চলমান ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ উপযোগী লঞ্চারে পরিণত করে। সে ধরণের ট্রাকের ওপরেই নতুন ঐ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো শনিবার রাতের প্যারেডে বহন করা হয়েছে, কিন্তু এই প্রথম ছটিরও বেশি তেমন ট্রাক চোখে পড়লো। অর্থাৎ, উত্তর কোরিয়া হয়তো এখন নিজেরাই নিজেদের মত করে এসব ট্রাক তৈরি করতে সমর্থ হচ্ছে বা জোগাড় করতে পারছে। সুতরাং এটা পরিষ্কার যে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা স্বত্বেও উত্তর কোরিয়া এখনও হেভি-ডিউটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপকের যন্ত্রপাতি জোগাড় করতে এবং এমনকী নিজেরাই হয়তো উৎক্ষেপক তৈরি করতে সক্ষম হচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার নতুন আইসিবিএম বাকি বিশ্বের জন্য একটিই বার্তা দিচ্ছে - তাদের রাষ্ট্র, নেতৃত্ব এবং তাদের মানুষের প্রযুক্তিগত সক্ষমতাকে যেন খাটো করে না দেখা হয়। মেলিসা হানহ্যাম,উপ পরিচালক, ওপেন নিউক্লিয়ার নেটওয়ার্ক (ওএনএন)। তিনি পারমাণবিক অস্ত্রের একজন বিশেষজ্ঞ। উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার মধ্যরাতের পরপরই পিয়ংইয়ংয়ে যে সামরিক কুচকাওয়াজ হয়েছে তা নজিরবিহীন। +text: শাহজাহানপুরে পাইপ থেকে চার বছরের শিশুকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে শুক্রবার বিকেলে জিয়াদ বা জিয়া নামে চার বছর বয়সী ঐ শিশুটি পাইপের ভেতর পড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করছে গত বেশ কয়েকঘন্টা ধরে। শাহজাহানপুর থানার ওসি মেহেদী হাসান বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য কিছুক্ষণ আগে রশির সঙ্গে বস্তা বেঁধে নিচে ফেলা হয়েছে। তবে, ''যে গর্তে শিশুটি পড়েছে সেটি অপরিসর হওয়ায় কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে।'' জানান মি: হাসান। তিনি জানান, পাইপটি অপরিসর হওয়ায় শিশুটিকে উদ্ধারে প্রাপ্তবয়স্ক কাউকে পাইপ দিয়ে নিচে নামানো যাচ্ছে না। তবে, এর মধ্যে পাইপে রশি বেঁধে শিশুটিকে খাবার ও পানীয় ���াঠানো হয়েছে। এছাড়া, অন্ধকারে শিশুটি যাতে ভয় না পায়, সেজন্য দুটি টর্চলাইটও পাঠানো হয়েছে বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন মিঃ হাসান। মি. হাসান আরো জানান, ওপর থেকে ডাকা হলে ও জিনিসপত্র পাঠাবার পর শিশুটি কয়েকবার সাড়াও দিয়েছে। বাংলাদেশে রাজধানী ঢাকার শাহজাহানপুরের রেলওয়ে মাঠসংলগ্ন পানির পাম্পের বেশ কয়েকশ ফুট গভীর একটি পাইপে এক শিশু পড়ে গেছে। +text: হুমকি ইমেইল ও ফোন পেয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক সারাহ হেউইট-ক্লার্কসন বার্মিংহামের ওই বিদ্যালয় প্রধান সারাহ হেউইট-ক্লার্কসনের কাছে পাঠানো মেসেজ বা বার্তাগুলো নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। গত সাত সপ্তাহ ধরে অ্যান্ডারটন পার্ক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাইরে নিয়মিতভাবে সাপ্তাহিক বিক্ষোভ প্রদর্শন করছিলেন অভিভাবকেরা। তারই অংশ হিসেবে সোমবারে কয়েকশো শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে আসতে দেওয়া হয়নি। বিদ্যালয়ে প্রতিবাদকারীদের বিচরণ ঠেকাতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ প্রদর্শনের জন্য আলাদা একটা স্থান রাখার কথা বলেছেন বার্মিংহামের সংসদ সদস্য জেস ফিলিপ্স। চলমান এই প্রতিবাদকে 'আক্রমণাত্মক' বলে বর্ণনা করেছেন অ্যান্ডারটন পার্ক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মিজ হেউইট-ক্লার্কসন। মূলত, শুধু মুসলিম বাবা-মায়েরাই এই বিক্ষোভ করছেন বলে জানানো হচ্ছে। ছেলে-মেয়েদের ক্রস-ড্রেসিং এবং সমকামের প্রসঙ্গটি ওই বিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভূক্ত থাকায় মুসলিম অভিভাবকেরা ক্ষুব্ধ হন। বিক্ষোভকারীদের নেতা এই পাঠ্য বিষয়বস্তুকে 'সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং' বলে ব্যাখ্যা করেছেন। আরো পড়তে পারেন: ভারতের দ্রুততম নারীর স্পষ্ট ঘোষণা- তিনি সমকামী সমকামিতা ভারতে আর অপরাধ নয়: সুপ্রিম কোর্ট অ্যঅন্ডারটন পার্ক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাইরে তাদের কার্যক্রমের সমর্থন জানিয়েছেন অনেক মানুষ মুসলিম অভিভাবকেরা শুধু বার্মিংহামের এই বিদ্যালয়ের পাঠ্য বিষয়বস্তুর বিরোধিতাই করছেন না, একই রকম শিক্ষার বিরোধিতা করে তারা ইংল্যান্ডের বহু স্কুলে চিঠি পাঠিয়েছেন। মিজ হেউইট-ক্লার্কসন বিক্ষোভকারীদের প্রসঙ্গে বলেছেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের নামে আসলে যা চলছে তা 'অত্যন্ত উচ্চকিত, খু্‌বই আক্রমণাত্মক এবং ক্লান্তিকর।' তিনি একের পর এক অভিভাবকদের সাথে বৈঠক করে যাচ্ছেন। এই মে থেকে জুনের শেষ নাগাদ অন্তত ১২টি বৈঠক অভিভাবকদের সাথে তার করার কথা বলে জানিয়েছেন এই প্রধান শিক্ষিকা। মিজ. হেউইট-ক্লার্কসনকে 'ইসলামোফোবিক' বা 'ইসলাম ভীতিতে' আক্রান্ত বলে কোনো কোনো অভিভাবক দাবী করলেও সেটিকে তিনি নাকচ করে দিয়েছেন। বরং 'সব মানুষের সমান অধিকারে' বিশ্বাসী বলে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। ইংল্যান্ডের নীতি অনুযায়ী, আগামী ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে 'রিলেশানশিপ্স এডুকেশন' বা মানবীয় সম্পর্কের বিবিধ ধরণ বাধ্যতামূলকভাবে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভূক্ত করা হবে। অ্যান্ডারটন পার্ক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তুর প্রতিবাদে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন শাকিল আফসার। যদিও তার কোনো সন্তান এই স্কুলে পড়ে না। কিন্তু তিনি মনে করেন যে, অ্যান্ডারটন পার্ক স্কুলে এলজিবিটি বা সমকামিতার প্রতি শিশুদেরকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। অভিভাবকেরা যে এই পাঠ্যসূচী পছন্দ করছেন না সেই বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা দিতেই প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থীকে তাদের পরিবার সোমবারে বিদ্যালয়ে আসতে দেননি বলেও উল্লেখ করেছেন মি. আফসার। তবে, স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রায় ৭০০ জন স্কুলে অংশ নিয়েছে। বিদ্যালয়ের বহিঃপ্রাঙ্গনে স্থানীয় এমপি মিজ. ফিলিপ্সের সাথে মত ভিন্নতার প্রেক্ষিতে মি. আফসারের এক প্রকার বচসাও হয়। ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস পুলিশ জানিয়েছে, বিদ্যালয়ের বহিঃপ্রাঙ্গনে যে 'বিশৃঙ্খল' পরিস্থিতি বিরাজ করছে তারা সেদিকে খেয়াল রাখছে। মিজ ফিলিপ্স বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা নিজের ইচ্ছামাফিক 'ইকুয়ালিটি' বা সমতার ব্যাপারটিকে ব্যাখ্যা করতে পারেন না। এই বিক্ষোভের সবচেয়ে 'বাজে দিক' হিসেবে তিনি বলেছেন, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের নামে বিক্ষোভকারীরা আসলে 'শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের সুনাম' বিনষ্ট করেছেন। তাই, ৭০০ শিশুর সুরক্ষার কথা বিবেচেনা করে তিনি একটি 'এক্সক্লুশান এরিয়া' বা প্রতিবাদ প্রদর্শনের জন্য একটি আলাদা স্থান নির্ধারণের কথা বলেছেন। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এই বিক্ষোভের বিরুদ্ধে পাবলিক স্পেসেস প্রটেকশান অর্ডার (পিএসপিও) বা জনপরিসর সুরক্ষার জন্য পদক্ষেপ নেয়া যাবে কিনা সেই বিষয়টিকে খতিয়ে দেখতে নিজের অফিসকে তাগিদ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বার্মিংহাম সিটি কাউন্সিলের নেতা ইয়ান ওয়ার্ড। মি. ওয়ার্ড বলেছেন, যদি পিএসপিও-কে প্রয়োগের বিধি না থাকে তাহলে তারা বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজবেন। কারণ বাধা-বিঘ্ন মুক্তভাবে শিক্ষার্থীদের এবং অ্যান্ডারটন স্কুলের কর্তৃপক্ষের বিদ্যালয়ে অংশ নেওয়ার অধিকার রয়েছে। যারা আন্দোলন করছেন তাদের বিষয়ে ইঙ্গিত করে ইয়ান ওয়ার্ড বলেছেন, অভিভাবকেরা বিদ্যালয়ের কারিকুলাম বা পাঠ্যপুস্তক পরিবর্তনের দাবী জানানো এক জিনিস। কিন্তু অন্যের অধিকার কেড়ে নেয়া বা সমাজে ঘৃণা ছড়ানো বা ভুল তথ্য ছড়ানো একেবারেই ভিন্ন প্রসঙ্গ। পিএসপিও প্রয়োগ হবে কিনা এই নিয়ে কাউন্সিলের একজন মুখপাত্র বলেছেন, এজন্য পাবলিক কনসাল্টেশান প্রয়োজন এবং সেই মতের উপরে ভিত্তি করে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে। তবে, এক্ষেত্রে পুলিশ সামনে থেকে নেত্বৃত্ব দেবে। আরো পড়তে পারেন: চীনে যৌন দাসত্বে বাধ্য করা হচ্ছে যে নারীদের ভিক্টোরিয়ান যুগে ধর্মান্তরিত তিন ব্রিটিশ মুসলিম যে পাঁচ কারণে হুয়াওয়েকে নিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব উদ্বিগ্ন সমকামিতা নিয়ে ক্লাসে পাঠদানের পর ইংল্যান্ডের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে হুমকি দিয়ে ইমেল ও ফোন করা হয়েছে। +text: গুজবকে কেন্দ্র করে গণপিটুনির মতো সহিংস ঘটনা ঘটছে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে। তার ভাগ্নে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু থানায় গিয়ে ছবি দেখে তার মরদেহ সনাক্ত করেন। ওই দিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে মিস্টার টিটু বলেন, "বাড্ডা থানার ইনফরমেশন সেন্টারে গিয়ে জানতে পারলাম যে, বাড্ডাতে এ ধরণের একটা ঘটনা ঘটেছে। তবে যাকে মারা হয়েছে বা আঘাত করা হয়েছে তার কোন নাম ঠিকানা নাই। আমি ভেবেছিলাম হয়তো গুজব। কিন্তু পরে আরেক কর্মকর্তার কাছে ছবি দেখে নিশ্চিত হই।" তিনি বলেন, "এ ঘটনার এমন সাজা হওয়া দরকার যা সব মানুষকে একটা বার্তা দেবে যে, আইনের কাজগুলো যাতে মানুষ নিজের হাতে তুলে না নেয়।'' ''তাদের শাস্তিটা হবে সব ধরণের কুসংস্কার ও অন্ধকারের বিরুদ্ধে। এমন একটা শাস্তি হবে যা বার্তা দেবে পশুত্বের বিরুদ্ধে।'' '' একটা মানুষ কতটা পশুর মতো নির্মম হলে এভাবে একটা মানুষকে মারতে পারে।" তিনি বলছেন। আরো পড়তে পারেন: কী কারণে গণপিটুনিতে হতাহতের ঘটনাগুলো ঘটছে গুজবে কান দিয়ে কেন মানুষ পিটিয়ে মারা হচ্ছে? ভারতে বেশির ভাগ গণধোলাইয়ের কেন্দ্রে এখন গরু আতঙ্ক বা নিরাপত্তাহীনতা সহিংস মানসিকতার জন্য দায়ী। বাড্ডা থানার এসআই সোহরাব হোসাইন বলেন, "এ ঘটনায় অজ্ঞাতদের নামে মামলা করা হয়েছে। সিসিটিভি ��ুটেজ দেখে জড়িতদের সনাক্ত করার চেষ্টা করছি আমরা। এখনো সনাক্ত করা যায়নি। সনাক্ত করা গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।" শুধু তাসলিমা বেগম রেনু নন, শনিবার ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে প্রাণ হারিয়েছেন আরো দুই জন। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আরিফুর রহমান বলেন, "শনিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে কমলগঞ্জের রহিমপুর ইউনিয়নের দেউরাছড়ায় এক যুবককে আটক করে উত্তেজিত জনগণ মারধর করে। পরে সদর হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়।" একই সন্দেহে আরেকটি হত্যার ঘটনার খবর মেলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে। সেখানেও এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এছাড়াও গাজীপুরে এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীসহ বিভিন্ন জেলায় বেশ কয়েক জনকে পিটিয়ে আহত করার খবর পাওয়া গেছে। নওগাঁয় ছেলে ধরা সন্দেহে ছয় জনকে উত্তেজিত জনতা গণপিটুনি দেয়ার পর তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সম্প্রতি পদ্মা সেতু নির্মাণে মানুষের মাথা লাগছে- এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর এ ধরণের গণপিটুনির ঘটনা শুরু হয়। গত ১৮ই জুলাই, নেত্রকোনায় এক যুবকের ব্যাগ থেকে এক শিশুর কাটা মাথা উদ্ধারের ঘটনা এসব গুজবে ঘি ঢালে। তবে নেত্রকোনার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওই গুজবের সাথে এ ঘটনার কোন সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশ পুলিশের মুখপাত্র সোহেল রানা বলেন, এসব ঘটনা বাংলাদেশ পুলিশ যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে দেখছে। এ ধরণের প্রতিটি ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি।" "আমরা সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এবং আমাদের অন্যান্য গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে এই ছেলেধরার নামে পিটিয়ে হত্যার সাথে সংশ্লিষ্ট যারা তাদের খুঁজে আইনের আওতায় আনবো। গুজব ছড়িয়ে যারা বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন, একটি স্থিতিশীল শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে যারা অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে তাদেরকে আমরা সতর্ক বার্তা জানাতে চাচ্ছি। তাদের বিরুদ্ধেও আমাদের টিমগুলো সক্রিয় রয়েছে," তিনি বলেন। এ ধরণের ঘটনা প্রতিরোধে কি ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে মিস্টার রানা বলেন, ''গণপিটুনির ঘটনা যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করতে আইনি তৎপরতা ছাড়াও জনসচেতনতা মূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন তারা।'' তিনি বলেন, "আমরা গণসচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি�� আমরা জনগণকে আহ্বান জানিয়েছি, যেন কোন ভাবেই তারা নিজের হাতে আইন তুলে না নেন। মিথ্যা বা বিভ্রান্তিমূলক কোন খবরে কান না দেন। কারো উপর যদি কোন সন্দেহ হয় তাহলে, পুলিশের সহায়তা নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।" তিনি বলেন, "এগুলো রুখতে একাধিক সাইবার টিম কাজ করছে। এরমধ্যে আমরা অনেককে গ্রেফতার করেছি। এর নেপথ্যে যারা আছে তাদেরকে অল্প সময়ের মধ্যেই আইনের আওতায় আনবো।" মিডিয়া ব্রিফ এবং পুলিশের ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রতিটি টিমের প্রতিটি ইউনিট পর্যায়ে নিজস্ব পেজের ও চ্যানেলের মাধ্যমে সতর্কতামূলক কর্মসূচী প্রচারের কথাও জানান তিনি। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: 'প্রিয়া সাহার বক্তব্য না শুনে ব্যবস্থা নয়' ভবিষ্যতের যুদ্ধ ঠেকাতে লেখক নিয়োগ ফরাসি আর্মির ভারতের সুপারিশে বীর খেতাব পাওয়া পাকিস্তানি সৈনিক সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে মস্কোতে বিক্ষোভ গণপিটুনি ঠেকাতে পুলিশের নজরদারি বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা গণপিটুনির কোন পরিকল্পনা থাকে না বলে এগুলো ঠেকানো কঠিন বলে মনে করেন সমাজ বিজ্ঞানী ড. ফাতেমা রেজিনা। তিনি বলেন, " ঘটনাগুলো যখন ঘটছে তখন, আসলে কি কারণে গণপিটুনি, কোন ছেলেধরা আছে কিনা, বা কোন পিকপকেটার আছে কিনা বা কোন ক্রিমিনাল আছে কিনা এগুলো বোঝার আগেই মানুষ আবেগের বশবর্তী হয়ে একাজগুলো করে। এখন মানুষের আবেগকে আপনি কিভাবে চেক দেবেন?" তবে তিনি বলেন যে, গণপিটুনি ঠেকানোর একমাত্র পথ হচ্ছে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা। টিকা দেয়া, বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের মতো বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রচারণার মাধ্যমে গণপিটুনি নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে সতর্কতার জন্য প্রতিদিনই প্রতিবেদন আসে। এধরণের পদক্ষেপ নিতে হবে, মানুষকে সচেতন করতে। তিনি বলেন, "সচেতনতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যম বিশেষ করে টেলিভিশনের বড় ভূমিকা পালন করতে হবে।'' ''কিছু ছোট ছোট বিজ্ঞাপন তৈরি করা যেতে পারে যেখানে দেখানো যেতে পারে যে এসব ঘটনায় কিভাবে মানুষ আক্রান্ত হয় তাহলে মানুষ সচেতন হবে। এছাড়া পাঠ্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা, লিফলেট প্রচার করা যেতে পারে, মাইকিং করা যেতে পারে। এগুলো মানুষকে বার্তা দেয়।" শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে এ ধরণের ঘটনা ঠেকানো সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। "কোন একটা গুজব সৃষ্টি হয়েছে তারপর সেখানে পুলিশ যাবে, সেটা নিয়ন্ত্রণ করবে এটা বেশ সময় সাপেক্ষ ব্যাপার," তিনি বলেন। শনিবার সকালে নিজের চার বছর বয়সী সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করানোর খবর জানতে গিয়ে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে প্রাণ হারান তাসলিমা বেগম রেনু। +text: ধান কাটার কাজে অংশ নিচ্ছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তাদের সবার পরনে প্যান্ট, শার্ট কিংবা টি-শার্ট। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ধান মাড়াইয়ের জন্য এটি মোটেও কোন আদর্শ পোশাক নয়। প্রশ্ন হচ্ছে - এই পোশাক পরিধান করে তারা কৃষকের জমির কতটুকু ধান কেটেছেন কিংবা মাড়াই করেছেন? এ ধরণের পোশাক পরে সত্যিই কি ধান কাটা সম্ভব? এতে কৃষকের আদৌ কোন লাভ হয়েছে? ফেসবুকে এখন এসব প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। টাঙ্গাইলের কালিহাতির এক কৃষক পাকা ধান ঘরে তুলতে না পারার ক্ষোভ এবং হতাশায় ফসলের মাঠে আগুন দিয়েছিলেন সপ্তাহ তিনেক আগে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন 'একমণ ধানের দামের চেয়ে একজন শ্রমিকের মজুরি বেশি' ধানের দাম: সংকট অনুমানে ব্যর্থ হয়েছে সরকার? কৃষকদের এবার কিছুটা ক্ষতি হবেই - কৃষিমন্ত্রী এরপর সেই কৃষকের ধান কেটে দেন স্থানীয় কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। তখন থেকেই বিভিন্ন জায়গায় ধান কাটা এবং সেটির প্রচারণা করার প্রবণতা বাড়তে থাকে। পুলিশের ধান কাটা নিয়ে ফেসবুকে দুই ধরণের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ সদস্যরা সবুজ ধান কাটছেন। আরেকটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তারা পাকা ধান কাটছেন। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আব্দুল আলিম মাহমুদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, "আমি একজন কৃষিবিদ। আমি কি কাঁচা ধান কাটার জন্য বলবো?" ধান মাড়াইয়ের এই ছবি ফেসবুকে ছড়িয়েছে। পুলিশের কাজ ধান কাটা কি-না সে প্রশ্নও তুলছেন অনেকে। ফেসবুকে কবির হোসেন নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, "কৃষকের সমস্যা ন্যায্যমূল্য নিয়ে, শ্রমিক নিয়ে না।" ইত্তেহাদ ফেরদৌস সজিব লিখেছেন, "দেশ আগাইছে বুঝা যায়, এখন ঘড়ি জুতা পইরা বন্দুক লইয়া ধান কাটতে যায়।" কিন্তু রংপুরের পুলিশ কমিশনার বলছেন, দরিদ্র কৃষককে সাহায্য করার জন্য পুলিশ সদস্যরা ধান কাটার কাজে অংশ নিয়েছিলেন। ছাত্রলীগের ধান কাটা ছাত্রলীগ নেতাদের ধান কাটার ছবি ফেসেবুকে আসার পর বিষয়টি নিয়ে অনেকে নানা মন্তব্য করছেন। গত এক সপ্তাহ যাবত বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ধান কাটার ছবি ফেসবুকে দেখা যাচ্ছে। সংগঠনটির তরফ থেকে এক বিবৃতির মাধ্যমে কৃষকদের সহায়তা করার জন্য তাদের সদস্যদের প্রতি আহবান জানানো হয়। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে সমালোচনা করছেন যে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ধান কাটার চেয়ে ছবি তুল ফেসবুকে দেয়ায় বেশি সক্রিয়। কামাল হোসেন লিখেছেন, "ভণ্ডামির একটা সীমা থাকা উচিত। এইসব না করে ধান এবং চালের দামের বৈষম্য কমাতে বলেন।" ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর ফেসবুক পেজ থেকে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট শেয়ার করা হলে সেখানে নুসরাত জাহান সুইটি নামে একজন কমেন্ট করেছেন: "সাবাস টাকার বদলে কামলা কয়জনের ধান কেটেছেন এবং এটা শুধু আজকের জন্য নাকি সারাজীবন নাকি শুধু লোক দেখানো নাটক"। তবে ছাত্রলীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক এস এম মাসুদুর রহমান দাবি করেন, তাদের কার্যক্রমের সাথে ছবি তুলে মানুষকে দেখানোর কোন সম্পর্ক নেই। "একটা কাজ করলে কিছু লোক সেটাকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করবে। এটা ঠিক না। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কৃষকরা আমার মোবাইলে ফোন করে ধন্যবাদ দিচ্ছে," বলছিলেন মি: রহমান। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একটি মেশিনে ধান মাড়াই করছেন। +text: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভে যোগ দেয় বিভিন্ন দল এবং সংগঠন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রধান কার্যালয় - পশ্চিমবঙ্গের বেলুড় মঠে এক ভাষণে যখন তিনি একথা বলছেন, তখন প্রধানমন্ত্রীর দু'দিনের কলকাতা সফরের বিরোধিতা করে সারা দিনরাত কলকাতার রাজপথে অবস্থান করছিলেন শয়ে শয়ে ছাত্র-যুব এবং নাগরিকত্ব আইন বিরোধী প্রতিবাদকারীরা। কলকাতারা প্রাণকেন্দ্রে যখন শয়ে শয়ে ছাত্রছাত্রী - যুবক এবং বহু সাধারণ মানুষ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিক্ষোভে রাত জাগছে, তার মধ্যেই মি. মোদী এক ভাষণে নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের পক্ষে নিজের মত আবারও জানানোর জন্য বেছে নিয়েছিলেন জাতীয় যুব দিবসের ভাষণ মঞ্চ। স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে কলকাতার কাছেই বেলুড় মঠে ওই ভাষণে তিনি বলেন, "দেশে, বিশেষ করে যুবসমাজের মধ্যে এখন একটা চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ। এই আইনটা কী, কেন এই আইন আনা জরুরি ছিল - সে ব্যাপারে যুবসমাজের মনে অনেক প্রশ্ন তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। যুবসমা���ের বহু মানুষ এটা বুঝেছেন।" এনআরসির বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভ চলছে কলকাতায় "কিন্তু এরকমও অনেকে আছেন, যারা ভুল বুঝছেন, গুজবের শিকার হয়েছেন। তাদের বোঝানোটাও আমাদের সবার দায়িত্ব। সেজন্যই দেশের - বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তরপূর্বের যুবসমাজকে কিছু জরুরি বিষয় বলা উচিত তার নিজের," বলছিলেন মি. মোদী। এরপরেই তিনি একে একে ব্যাখ্যা করেন যে ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পরে তৈরি হওয়া পাকিস্তানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপরে ৭০ বছর ধরে কীভাবে অত্যাচার হয়েছে। সে দেশের সংখ্যালঘু মা বোনেদের কীভাবে ইজ্জতহানি হয়েছে এবং শুধু যে সেইসব কথিত অত্যাচারের শিকার হওয়া মানুষদেরই ভারতের নাগরিক হওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছে, কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য এই আইন নয়, সেটাও বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী মোদী ভাষণ শুনতে হাজির হওয়া মানুষদের প্রশ্ন করেন, "দেশভাগের পর থেকে পাকিস্তানে যেসব মানুষ ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে অত্যাচারিত হয়ে ভারতে চলে এসেছেন, তাদের কি মরার জন্য সেদেশে ফেরত পাঠানো উচিত?" কয়েক হাজার ছাত্র-যুবক সমস্বরে তার বক্তব্য সমর্থন করেন। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে কলকাতার বিক্ষোভ তারপরেই নরেন্দ্র মোদী বলেন, "যেটা আপনারা বুঝতে পারছেন, কমবয়সী ছাত্ররাও বুঝে গেল। কিন্তু সেটাই রাজনীতির খেলোয়াড়রা বুঝেও বুঝতে চাইছে না। এত কিছু স্পষ্ট করে বারবার বলা সত্ত্বেও রাজনৈতিক কারণে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে লাগাতার ভুল ছড়াচ্ছেন।" কিছুক্ষণের মধ্যেই মি মোদী কী কী বলেছেন বেলুড় মঠে, তা জানতে পেরে যান এসপ্ল্যানেড অঞ্চলে রাতভর বিক্ষোভরত ছাত্র-যুবরা। তারা তখনও মোদীবিরোধী এবং নাগরিকত্ব আইন বিরোধী স্লোগান দিয়ে অবরোধ করে রেখেছিলেন এসপ্ল্যানেড অঞ্চল। শনিবার দুপুর থেকে প্রায় ২৪ ঘন্টা ধরে বিক্ষোভ অবস্থান করেছেন তারা শীতের রাতে। কিন্তু তাদের কথায় আর স্লোগান দেওয়ায় ক্লান্তি ছিল না। এক ছাত্রী বলছিলেন, "শীতের রাতে রাজপথে বসে থাকাটা কষ্টকর তো বটেই, কিন্তু নাগরিকত্ব আইন সম্পূর্ণভাবে চালু হয়ে গেলে বা এনআরসি শুরু হলে যে কষ্টে পড়ব, তার থেকে রাস্তায় রাত জাগাটা কম কষ্টের।" অন্যান্য খবর: ভূপাতিত বিমান নিয়ে 'মিথ্যে' বলায় ইরানে বিক্ষোভ প্রিন্স হ্যারিকে নিয়ে ব্রিটিশ রাজপরিবারে সংকট এবছর মহাকাশে যাবে প্রথম যে পর্যটক দল এক ছাত্রী অন্বেষা রায়ের ক��ছে মি. মোদীর ভাষণের প্রসঙ্গে তুলতেই তিনি পাল্টা প্রশ্ন করলেন, "প্রতিবেশী দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের কথা বলছেন উনি, তাই ওঁর কাছে আমি জানতে চাই পাকিস্তানের আহমেদিয়ারা বা মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা তাহলে কী দোষ করল? তাদের কেন নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না! তারাও তো ওইসব দেশে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত।" রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রধান কার্যালয় - পশ্চিমবঙ্গের বেলুড় মঠে ভাষণ দিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী "আসলে এসব প্রশ্নের উত্তর নেই ওদের কাছে। যেখানে গোটা ভারতের লাখ লাখ লোক প্রতিবাদ করছে, সবাই একসঙ্গে ভুল বুঝেছে বলতে চান তিনি?" প্রশ্ন অন্বেষা রায়ের। বিক্ষোভরত এক ছাত্র প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের ওই প্রসঙ্গটি তুলে ধরলেন, যেখানে প্রধানমন্ত্রী বলছিলেন যে রাজনৈতিক কারণে ছাত্র-যুবদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। "কাল থেকে যে আমরা রাস্তায় বসে আছি, সেখানে কোনও রাজনৈতিক দলেরই পতাকা নেই। আমরা উপলব্ধি করেছি বলেই রাস্তায় নেমেছি। কোনও রাজনৈতিক দল আমাদের ভুল বোঝাবে আর আমরা রাত জেগে রাস্তায় পড়ে থাকব?" বলছিলেন ওই ছাত্র। পাশেই দাঁড়ানো এক ছাত্রী বলছিলেন, "আমরা সিএএ আইনটা পড়েছি। এনআরসি-টা জেনেছি। আর ইতিহাসটাও পড়েছি। সব জেনে বুঝেই প্রতিবাদে নেমেছি। কেউ আমাদের ভুল বুঝিয়ে রাস্তায় নামায়নি।" নদীয়া থেকে কলকাতার বিক্ষোভে যোগ দিতে এসেছিলেন এক ছাত্র মইদুল শেখ। তিনি ব্যঙ্গ করে বললেন, "দেশের বড় বড় আমলা, অফিসার, অক্সফোর্ড, হার্ভাড, জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটি বা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এত ছাত্র-ছাত্রী-অধ্যাপক সবাই ভুল বুঝেছে - শুধু ভক্তরাই ঠিক বুঝেছে!" ওদিকে রামকৃষ্ণ মিশনের স্কুলগুলির ছাত্রদের একাংশ সামাজিক মাধ্যমে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন যে, চিরকাল রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও নরেন্দ্র মোদীর মতো একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে কী ভাবে মঠে রাত্রিবাস করতে দেওয়া হল, তা নিয়ে। ঘটনাচক্রে, ৬০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে অল্পবয়সী নরেন্দ্র মোদী গুজরাটের এক রামকৃষ্ণ মিশনে হাজির হয়ে সন্ন্যাসী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু সেই সময়ে মিশনের সিনিয়র সন্ন্যাসীরা তার সেই অনুরোধ ফিরিয়ে দেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে যে ছাত্র-তরুণরা প্রতিবাদ- বিক্ষোভ করছেন, তারা আসলে আইনটা না বুঝেই তা করছেন। রাজন��তিক স্বার্থের জন্য কোনও মহল থেকে তাদের ভুল বোঝানো হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন মি. মোদী। +text: ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে এই সমাবেশের মাধ্যমে হেফাজতে ইসলাম আলোচনায় এসেছিল। এই ইস্যুতে এতদিন আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা সরাসরি কোনো মন্তব্য না করলেও শনিবার দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ ভাস্কর্য বিরোধী বক্তব্যের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান ব্যক্ত করেন। প্রায় দুই মাস ধরে ঢাকার ধোলাইপাড় চত্বরে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাস্কর্য তৈরি করার পরিকল্পনার বিরোধিতা করে আসছিল অনেকগুলো ইসলামপন্থী দল, তবে হেফাজতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা গতকালই প্রথমবারের মত কড়া ভাষায় নিজের ভাস্কর্য-বিরোধী অবস্থান পরিস্কার করেন। শুক্রবার চট্টগ্রামের হাটহাজারীর এক সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশের আমীর তার বক্তব্যে বলেন, যে কোনো 'ভাস্কর্য তৈরি করা হলে তা টেনে-হিঁচড়ে নামিয়ে ফেলা হবে।' হেফাজতে ইসলামীর শীর্ষ নেতার এমন মন্তব্যের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা ঐ মন্তব্যের প্রতিবাদ করে বক্তব্য দিয়েছেন। কী বলছেন আওয়ামী লীগ নেতারা? শনিবার সকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জুনায়েদ বাবুনগরীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মন্তব্য করেন যে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য 'টেনে-হিঁচড়ে নামিয়ে ফেলবে বলে কোনো কোনো ধর্মীয় নেতা ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দিচ্ছেন।' তিনি বলেন, "শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নিয়ে একটি ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর অনভিপ্রেত ও উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, এদেশের আবহমানকালের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রতি চ্যালেঞ্জ বলে আমরা মনে করি।" "তারা ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে ধর্মপ্রিয় মানুষের মধ্যে বিদ্বেষ তৈরির চেষ্টা করছে।" আরো পড়তে পারেন: 'আমার আব্বার ভাস্কর্যও ছিঁড়ে, টেনে-হিঁচড়ে ফেলে দেব' - বাবুনগরী মুজিব ভাস্কর্য: 'আওয়ামী লীগের নিজের ঘরেই সাপ ঢুকেছে' বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে জুনাইদ বাবুনগরী আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ জুনায়েদ বাবুনগরীর বক্তব্যকে 'উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ ছড়ানোর অপচেষ্টা' হিসেবে বিবৃত করে���েন। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, "সৌদি আরব, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, পাকিস্তান সহ বিশ্বের অনেক মুসলিম দেশেই ভাস্কর্য রয়েছে। সেখানে বাংলাদেশে ভাস্কর্য হতে পারবে না কেন?" "এই ধরণের উগ্রবাদী, জঙ্গিবাদী কথাবার্তা বলে তারা ইসলামের মত শান্তির ধর্মকে মানুষের কাছে বিতর্কিত করে তুলছে এবং মূর্খের মত উন্মাদনা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। সরকার বা জনগণ কেউই এটি বরদাস্ত করবে না।" তবে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা এই বিষয় নিয়ে মন্তব্য করলেও দলটি বা এর কোনো অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ভাস্কর্য তৈরির বিরোধিতা নিয়ে চলতে থাকা দ্বন্দ্বের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিতে দেখা যায়নি। ঢাকার ধোলাইপাড় চত্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাস্কর্য তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে অক্টোবর মাসের শুরু থেকেই ইসলামপন্থী কয়েকটি দল প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে আসলেও বিষয়টি আলোচনায় আসে ১৩ই নভেম্বর ঢাকায় একটি সম্মেলনে খেলাফত মজলিশের শীর্ষ নেতার বক্তব্যের পর। সেসময় তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেছিলেন, ভাস্কর্য নির্মাণ পরিকল্পনা থেকে সরে না দাঁড়ালে তিনি আরেকটি শাপলা চত্বরের ঘটনা ঘটাবেন এবং ওই ভাস্কর্য ছুঁড়ে ফেলবেন। তার ওই বক্তব্য সরকারি দল আওয়ামী লীগে অস্বস্তি তৈরি করে। এরপর আওয়ামী লীগ আনুষ্ঠানিকভাবে কোন প্রতিক্রিয়া না দেখালেও দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেছিলেন, তারা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন। এরপর দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে শুরু করে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে। ঢাকায় ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয়ভাবেও সমাবেশ করে ভাস্কর্যের বিরোধীতাকারীদের উচিৎ জবাব দেবার হুমকি দেয়। বাংলাদেশ হেফাজত ইসলামীর আমীর জুনায়েদ বাবুনগরীর ভাস্কর্য-বিরোধী বক্তব্যের প্রতিবাদ করে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। +text: ভোট হয়ে গেছে, ফল আসছে না... অপেক্ষায় এক ভোটার কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কে হবেন তা নির্ধারণের জন্য আইওয়া রাজ্যে যে 'প্রাইমারি' বা প্রথম পর্বের ভোটাভুটি হচ্ছিল - তাতে এমনটাই ঘটেছে। মার্কিন নির্বাচনে এরকম ঘটনার কথা সচরাচর শোনা যায় না। আইওয়া রাজ্যের ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান ট্রয় প্রাইস এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, "এটা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য, এবং আমি এ জন্য ���ভীরভাবে দু:খ প্রকাশ করছি।" এখন পর্যন্ত যে ফলাফল এসেছে তা ৭১ শতাংশ ককাস থেকে - তাতে সামান্য ব্যবধানে বার্নি স্যান্ডার্সের চেয়ে এগিয়ে আছেন পিট বুটিজেজ, এবং এটাও অনেককে বিস্মিত করেছে। ভোটের ফল প্রকাশ নিয়ে এই গোলমালের কারণটা কী? ট্রয় প্রাইস জানান, নির্বাচনের ফল জানানোর একটি এ্যাপের প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণেই এমনটা হয়েছে। তবে তিনি বলেন, ভোটের সব উপাত্ত সুরক্ষিত আছে এবং এই গোলমাল কেন হলো - এর এক পূর্ণ অনুসন্ধান হবে। আইওয়া অঙ্গরাজ্যের পার্টি কর্মকর্তারা বলেছেন, কোন হ্যাকিং বা সিস্টেমে কোন অনুপ্রবেশের কারণে এটা ঘটেনি। আরো পড়তে পারেন: ট্রাম্পকে হারানোর লড়াই শুরু হচ্ছে আমেরিকায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সম্পর্কে কিছু তথ্য ২০২০ নির্বাচনে ট্রাম্পের অভিশংসন প্রভাব ফেলবে? বার্নি স্যান্ডার্স অঙ্গরাজ্যের ১ হাজার ৬শ নির্বাচনী এলাকা থেকে ভোটাভুটির ফল পার্টির কাছে রিপোর্ট করার জন্য একটি মোবাইল এ্যাপ ব্যবহার করা হচ্ছিল - যা ক্র্যাশ করেছে বা অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এখন কর্মকর্তারা ভোটাভুটির কাগজে লেখা আসল দলিলপত্র বা 'হার্ড কপি' পরীক্ষা করে দেখছেন। এ্যাপটি বানিয়েছে শ্যাডো নামে একটি ফার্ম । ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের প্রচারাভিযানের সাথে যুক্ত ব্যক্তিরাই এটি বানিয়েছেন। তবে মাত্র দু মাস আগে তৈরি করা এ্যাপটি যথাযথভাবে পরীক্ষা করে দেখা হয় নি বলে জানিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস। তবে আমেরিকান সংবাদমাধ্যমে এবং ভোটারদের মধ্যে এই প্রাইমারির ফলাফল নিয়ে তৈরি হয় নজিরবিহীন বিভ্রান্তি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আইওয়া রাজ্যের ভোটকে খুবই গুরুত্বের সাথে দেখা হয়। অনেকে দাবি করেছেন এ ঘটনার পর ওই রাজ্যের শীর্ষ মর্যাদা কেড়ে নিতে হবে। নেভাদা অঙ্গরাজ্যে ২২ শে ফেব্রুয়ারির ভোটেও এই এ্যাপ ব্যবহারের কথা ছিল , কিন্তু সেখানকার পার্টি সে সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে। রিপাব্লিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, আইওয়ায় ডেমোক্র্যাটদের এই ভোটাভুটি ছিল এক দুর্যোগ। কে এই পিট বুটিজেজ? ইন্ডিয়ান রাজ্যের ছোট শহর সাউথ বেন্ডের সাবেক মেয়র পিট বুটিজেজের বয়স মাত্র ৩৮। তিনি পরিষ্কার করেই জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি একজন সমকামী। তিনি যদি প্রেসিডেন্ট হন তাহলে তিনিই হবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সমকামী প্রেসিডেন্ট। পিট বুটিজেজ তিনি পড়াশোনা করেছেন হার্ভার্ড ও ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে, তার পর সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা হিসেবে আফগানিস্তানে কাজ করেছেন। অনেকগুলো ভাষা জানেন তিনি। তবে তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা বলছেন, তার মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট হবার মতো অভিজ্ঞতা নেই। তবে আইওয়া প্রাইমারির এখন পর্যন্ত পাওয়া ফলে দেখা যাচ্ছে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ বার্নি স্যান্ডার্সের চাইতে সামান্য ব্যবধানে হলেও এগিয়ে আছেন তিনি। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো - বহু জনমত জরিপে সম্ভাব্য ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে যিনি এগিয়েছিলেন, সেই বারাক ওবামার সময়কার সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আইওয়ার ফলাফলে বহু পিছিয়ে আছেন। বুটিজেজ পেয়েছেন ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট, বার্নি স্যান্ডার্স ২৫ দশমিক ২ শতাংশ ভোট। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: ফেন্সিডিলের বোতল দিয়ে ম্যাপ বানিয়ে বিপাকে বিজিবি 'বিদেশিরা পাচার করছে ২৬ হাজার কোটি টাকা' 'বিয়ের আগে সেক্স করো না' এ পরামর্শে কি কাজ হয়? ভোট হয়ে গেছে, ফলাফল জানানো হচ্ছে না। কেন? জানা গেল 'টেকনিক্যাল সমস্যা।' সোমবারের ভোটের পুরো ফলাফল এখনো জানানো হয় নি। +text: জার্মানির বিদায় ছিল অন্যতম অপ্রত্যাশিত ঘটনা কারণ এবারের বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব ছিল সত্যি উপভোগ্য, এবং এখানে এমন কিছু মুহূর্ত ছিল - যা নিয়ে অনেকদিন ফুটবলপ্রেমীরা আলোচনা করবেন। এক নম্বর নিশ্চয়ই জার্মানির ছিটকে যাওয়া। দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বের শেষ খেলায় ইনজুরি টাইমে ২ গোল খেয়ে হেরে যায় জার্মানি। ১৯৩৮ সালের পর এই প্রথম তারা গ্রুপ পর্বে ছিটকে গেল। মনে রাখতে হবে, জার্মানির কিন্তু সুইডেনের বিরুদ্ধে এর আগের ম্যাচেও গ্রুপ পর্ব না পেরোতে পারা আশংকা তৈরি হয়েছিল কিন্তু টোনি ক্রুস এক দারুণ ফ্রিকিকে গোল করেন ৯৫ মিনিটের মাথায় - যার ফলে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত জার্মানির আশা ছিল দ্বিতীয় পর্বে যাবার। এবারের বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব ভরা ছিল ম্যাচগুলোতে শেষ-মুহূর্তের নাটকীয়তা, আর অপ্রত্যাশিত মোড়-বদলে। জার্মান পত্রিকায় বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাবার খবর সার্বিয়ার বিরুদ্ধে খেলায় সুইৎজারল্যান্ডের জেরদান শাকিরির শেষ মুহূর্তের ম্যাচ জেতানো গোল - এবং তার রাজনৈতিক বার্তাবাহী 'জোড়া ঈগল-উদযাপন' ছিল আরেকটি ঘটনা। ইরানের মিলাদ মোহাম্মদি স্পেনের বিরুদ্ধে ম্যাচে যে বিচিত্র ভঙ্গিতে ডিগবাজি-সহ থ্রো-ইনের চেষ্টা করেন - তার ভিডিও অনলাইনে ভাইরাল হয়েছিল। আর্জেন্টিনা গ্রুপ পর্বে দুটি খেলার পরই অনিশ্চয়তা দেখা দেয় যে তারা গ্রুপ পর্ব পেরোতে পারবে কিনা। কিন্তু শেষ ম্যাচে লিওনেল মেসি এবং মার্কোস রোহোর দুটি গোলের সুবাদে তাদের দ্বিতীয় পর্বে ওঠা নিশ্চিত হয়। নাইজেরিয়ার বিরুদ্ধে গোল করার পর মেসি ব্রাজিলও কোস্টারিকার বিরুদ্ধে শেষ মুহূর্তে গোল করে বিশ্বকাপে তাদের অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করে। স্পেনের বিরুদ্ধে ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর হ্যাটট্রিক, এবং পর্তুগালকে এবার রোনাল্ডো বিশ্বকাপ জেতাবেন কিনা - তা ছিল বড় আলোচনার বিষয়। খেলা জমেছে, কিন্তু গোল কম? বিশ্বকাপ ২০১৮-র গ্রুপ পর্বে মোট গোল হয়েছে ১১৮টি, তার গত বিশ্বকাপগুলোর তুলনায় খুব বেশি নয়। গ্রুপ পর্বে সবচেয়ে বেশি গোল হয়েছিল ২০১৪ সালে - মোট ১৩৬ টি। ২০০২ সালের বিশ্বকাপে ১৩০টি, ১৯৯৮এর বিশ্বকাপে ১২৬টি। গ্রুপ পর্বে এবারের চেয়েও কম গোল হয়েছে কেবল ২০১০ আর ২০০৬এর বিশ্বকাপে - যথাক্রমে ১০১ এবং ১১৭টি । ভিএআর ভিএআর রাশিয়া বিশ্বকাপের অন্যতম আলোচিত চরিত্র ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি বা ভিএআর। ভিএআর খেলায় এনেছে নতুন উত্তেজনা, প্রভাব ফেলেছে ফলাফলে। চিত্রটা পরিষ্কার পেনাল্টি থেকে। বত্রিশ দলের বিশ্বকাপ চালুর পর এবারেই সবচেয়ে বেশি পেনাল্টি হয়েছে গ্রুপ পর্বে, মোট ২৪টি। গত পাঁচটি বিশ্বকাপে পুরো টুর্নামেন্ট মিলিয়েও এত পেনাল্টি হয় নি। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: রোহিঙ্গাদের জন্য ৪৮ কোটি ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কি নতুন সংশয় তৈরি করলেন? বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব শেষ হয়েছে। শেষ-১৬ পর্বের শুরুর আগে এক বার চটজলদি মনে করে নেয়া যাক গ্রুপ পর্বের সেরা মুহূর্তগুলো। +text: রাজধানীতে যানবাহনের বেপরোয়া চলাচল। তার রক্তে সেপ্টিসিমিয়া জীবানুর সংক্রমনে যে জ্বর হয়েছে সেটা না সারার কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে জানান বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। বুধবার দুপুরে রোজিনার স্বাস্থ্যের অবস্থার অবনতি হলে তাকে জাতীয় পঙ্গু হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে বার্ন ইউনিটের অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালা��কে প্রধান করে ৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। সেখানে ড. সামন্ত লাল সদস্য হিসেবে ছিলেন। আরো পড়ুন: হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া সেই রাজীব মারা গেছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের দাপটে যাত্রীরা অসহায় দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কি করছে কর্তৃপক্ষ? কতটা অনিরাপদ ঢাকার গণপরিহণ তবে সেপ্টিসিমিয়া থেকে জ্বর ও শ্বাসকষ্টসহ অন্যান্য জটিলতা দেখা দেয়ায় তার শারীরিক অবস্থার ক্রমেই অবনতি হতে থাকে। পরে আজ সকালে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। গত ২০ এপ্রিল রাতে বনানির চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় একটি বিআরটিসি বাস রোজিনার ডান পায়ের ওপর দিয়ে চলে গেলে পা'টি হাটু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে তাকে দ্রুত জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান বা পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দুই দফার অস্ত্রোপচার শেষে তার পা হাটু পর্যন্ত কেটে ফেলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু পরবর্তীতে সেখানে পচন ধরা শুরু হলে পুরো পা বিচ্ছিন্ন করা হয়। তবে শরীরে সেপ্টিসিমিয়া জ্বর বাসা বাধার কারণে তার শরীরের পচন নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিলো না। এতে শারীরিক অবস্থার দিন দিন অবনতি হতে থাকে বলে জানান ড. সামন্ত লাল। এ ঘটনায় বনানি থানায় মামলা করা হলে পুলিশ ঘাতক বাস চালককে গ্রেফতার করে। ২১ বছর বয়সী রোজিনার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ঘোষগাঁও গ্রামে। তিনি ১০ বছর ধরে সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজার বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। মহাখালিতে আত্মীয়ের বাসা থেকে গুলশানে সৈয়দ ইশতিয়াক রেজার বাসায় ফেরার পথে তিনি দুর্ঘটনার শিকার হন। এর আগে বাসের চাপায় হাত হারানো তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: চীনে বিভিন্ন শহরজুড়ে কেন বাইসাইকেলের পাহাড়? যে পাঁচ যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরেও বহুকাল চলেছে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘ কি করতে পারে? রাজধানীর বনানিতে বাসের চাপায় পা হারানো রোজিনা আক্তার মারা গেছেন। রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। +text: ঠাকুরগাঁও থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার এই ছবিটি তুলেছেন সিলভিয়া নাজনীন পঞ্চগড়ের বাসিন্দা জবল-ই-রহমত বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, ''প্রতি বছরই এই সময়ে আমাদের জেলা থেকে কম বেশি কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। কিন্তু এই বছরের মতো এতো পরিষ্কারভাবে অনেক বছর দেখা যা��়নি।'' তিনি জানান, জেলার সব প্রায় সব জায়গা থেকেই শুভ্র সাদা বরফে আচ্ছাদিত পর্বতমালাটি দেখা যাচ্ছে। এমনকি কোন কোন স্থান থেকে পর্বতমালার নীচের কয়েকটি শহরের ঘরবাড়ি, আলো, গাড়ি চলাচলও দেখা যাচ্ছে। ঠাকুরগাঁও থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পেয়ে মুগ্ধ সিলভিয়া নাজনীনের মতো অনেক পর্যটক কাঞ্চনজঙ্ঘা ভারতের সিকিম ও নেপাল জুড়ে অবস্থিত। এটি পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ। এর উচ্চতা ৮,৫৮৬ মিটার বা ২৪, ১৬৯ ফুট। কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্যটকদের কাছে অন্যতম জনপ্রিয় একটি আকর্ষণ। ভারতের অন্যতম শৈল শহর দার্জিলিং, ঘুম বা কালিম্পংয়ের প্রধান আকর্ষণ কাঞ্চনজঙ্ঘা। তেতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলছেন, ''বছরের এই সময়ে বৃষ্টি হওয়ায় আর বাতাসে ধুলা, মেঘ-কুয়াশামুক্ত থাকায় অনেক দূরের কাঞ্চনজঙ্ঘা পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে। অন্য বছরেও এই সময়ে এখান থেকে এই পর্বত দেখা যায়। তবে এই বছরে আবহাওয়া বেশি পরিষ্কার থাকার কারণে অনেক ভালোভাবে দেখা যাচ্ছে।'' আরো পড়তে পারেন: হিমালয়ের চূড়ায় পর্বতারোহীর এত ভিড় যে কারণে পবর্তারোহীদের জন্য কতটা প্রাণঘাতী মাউন্ট এভারেস্ট? বাংলাদেশের যে স্থানগুলো পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় কীভাবে একজন ভাল পর্যটক হবেন পঞ্চগড়ের বাসিন্দা জবল ই রহমত বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, ''প্রতি বছরই এই সময়ে আমাদের জেলা থেকে কম বেশি কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। কিন্তু এই বছরের মতো এতো পরিষ্কারভাবে অনেক বছর দেখা যায়নি।'' এই বছরে শুধু পঞ্চগড়ই নয়, নীলফামারী ও ঠাকুরগাঁও জেলার কয়েকটি এলাকা থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাচ্ছে। এসব জেলা থেকে এর আগে এই পর্বতশৃঙ্গটি দেখা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে ঠাকুরগাঁওয়ে গিয়েছেন সিলভিয়া নাজনীন। তিনি বিবিসিকে বলছেন, ''প্রথমবারের মতো উত্তরবঙ্গ এসে গতকাল কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পেয়ে মুগ্ধ হয়ে গেছি। এতো সুন্দর লাগছে সবকিছু!'' এরপরে তার পঞ্চগড় আর তেতুলিয়া যাওয়ার ইচ্ছা আছে। যারা কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাচ্ছেন, তারা সকলেই নানা আঙ্গিকে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করছেন। গত কয়েকদিন ধরে ফেসবুকে এরকম অসংখ্য ছবি দেখা যাচ্ছে। পর্যটকদের কাছে কাঞ্চনজঙ্ঘা সবসময়েই আকর্ষণীয়। ছবিটি পঞ্চগড় থেকে তোলা লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পেয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্��� করেছেন রহমান মাসুদ। সেখানে দেখা যাচ্ছে, আধ পাকা ধান ক্ষেতের ওপর দিয়ে মাঝ আকাশে পরিষ্কার ফুটে রয়েছে সাদা রঙের বরফে আচ্ছাদিত পর্বত চূড়া। মাকসুদা রহমান নামের একজন লিখেছেন, ''কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাওয়ার খবর পেয়ে বন্ধুরা মিলে পঞ্চগড় এসেছি। দার্জিলিং গিয়ে মেঘের জন্য পর্বতটি দেখতে পাইনি। এখন বাংলাদেশে থেকে দেখে খুব ভালো লাগছে।'' পরশ রহমান যেমন ফটোশপ করা ছবি ফেসবুকে দিয়ে মজা করে লিখেছেন, তার মিরপুরের বাসা থেকেও পরিষ্কারভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাচ্ছে। পঞ্চগড় থেকে জবল-ই-রহমত বলছেন, কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার জন্য গত কয়েকদিনে তার বাসাতেই অনেক মেহমান এসেছেন। শহরের কোন হোটেলেই আর জায়গা ফাঁকা নেই। প্রতিদিনই বিভিন্ন জায়গা থেকে পঞ্চগড়ে আসছেন পর্বতচূড়া দেখার জন্য। তবে বাংলাদেশের অন্য যেসব শহরের বাসিন্দারা কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার সুযোগ পাননি, পিছিয়ে নেই তারাও। অনেকেই ফটোশপ করে কাঞ্চনজঙ্ঘার ছবি বসিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করছেন। পরশ রহমান যেমন তার মিরপুরের বাসার ফটোশপ করা ছবি ফেসবুকে দিয়ে মজা করে লিখেছেন, তার মিরপুরের বাসা থেকেও পরিষ্কারভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাচ্ছে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: ফরাসী প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁ মুসলিমদের বিক্ষোভ নিয়ে যা বললেন আরেক মহামারির সময় কীভাবে উদ্ভাবন হল আধুনিক ভেন্টিলেটার আমেরিকা-চীন বিচ্ছেদের পরিণতি কীভাবে পুরো বিশ্বকে ভোগ করতে হবে কানাডায় তরবারি দিয়ে কুপিয়ে দুজনকে হত্যা, ৫ জন আহত ভ্রমণে কী করবেন কী করবেন না। বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলা থেকে এই বছর বেশ পরিষ্কারভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃংঘ দেখা যাচ্ছে। এই দৃশ্য দেখার জন্য অনেকেই এসব জেলায় ভিড় করছেন। ফেসবুকেও অনেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাওয়ার ছবি পোস্ট করছেন। +text: প্রতিদিনই কাছের কারো আক্রান্ত হওয়ার অথবা মারা যাওয়ার খবর অনেক বেশি কানে আসছে। কিন্তু করোনাভাইরাস এখন আর দুরের কোন এলাকার খবর নয়। মনে হচ্ছে করোনাভাইরাস এখন যেন প্রতিটি মানুষের খুব কাছে চলে এসেছে। প্রতিদিনই আত্মীয়, বন্ধু, সহকর্মী, প্রতিবেশীদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার অথবা মারা যাওয়ার অনেক বেশি খবর কানে আসছে। শুরুর দিকের উদ্বেগও যেন ভিন্নরূপ নিয়েছে। বিভিন্ন বিষয় অবলম্বন করে অনেকেই তা মোকাবেলা করার চেষ্টা করছেন। শঙ্কা কাটাতে যা করছেন অনেকে ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা সুমাইয়া বিনতে মাসুদ কয়েকদিনের ব্যবধানে জেনেছেন তার ফুপার পরিবারের সবাই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তির একদিনের মাথায় ফুপাকে শ্বাসপ্রশ্বাসে যন্ত্রের সাহায্য দিতে হচ্ছে। তিনি বলছেন, ইদানীং চারপাশে এত আক্রান্ত আর মৃত্যুর খবর কানে আসছে যে তার মধ্যে এক ধরনের মৃত্যু ভয় কাজ করতে শুরু করেছে। কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? বিশ্ব মহামারি শেষ হতে কতদিন লাগবে? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় করোনাভাইরাস নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন তার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলছেন, "আমার ফুপার কথাটাই বলি, সে ছিল একদম সুস্থ মানুষ। জ্বর হওয়ার পর অক্সিজেন কমে গেলে হাসপাতালে নেয়া হয়। এর একদিনের মাথায় তাকে ভেন্টিলেটরে দিতে হয়েছে। এই জায়গাটা আমাকে খুব হিট করেছে। আজকে আমি কাজ করছি, ভালো আছি। হয়ত দুই দিন পর থাকবো না।" "মৃত্যু খুবই সত্যি এই অনুভূতিটা আরও শক্তিশালী হয়েছে। এখন দিনের মধ্যে অনেকবার মৃত্যুর চিন্তা করছি। আগে যেটা করতাম না।" সুমাইয়া বিনতে মাসুদ খবর দেখা বন্ধ করে দিয়েছেন। তার যদি মৃত্যু হয় তাহলে কোন কাজগুলো করতে হবে সেটি স্বামীকে বলে রেখেছেন। ঢাকার মুগদা পাড়ার বাসিন্দা উম্মে আফতাব তন্বী হঠাৎ করে আগের থেকে অনেক বেশ ধর্মভীরু হয়ে উঠেছেন। কয়েকদিন আগে তিনি জেনেছেন তার স্বামীর এক বন্ধু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তার কলোনিতে প্রচুর সংক্রমণ ধরা পরেছে। করোনাভাইরাস এখন আর শুধু টেলিভিশনের খবর নয়। তিনি বলছেন, "আগে যদিও দুই এক ওয়াক্ত বাদ যেত এখন একদমই না। নামাজ পরছি, কোরআন তেলাওয়াত করছি। আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই। বলি আল্লাহ আমরা তোমার বান্দা যারা, সেই যেই ধর্মেরই হোক, আমাদের আর একবার শুদ্ধ হওয়ার সুযোগ দাও। আমাদের ক্ষমা করে এবারকার মতো রেহাই করো।" করোনাভাইরাসকে মেনে নেয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের অধ্যাপক জোবাইদা নাসরিন বলছেন, অনেকেই করোনাভাইরাসের সাথেই বসবাস করতে হবে এই বিষয়টি মেনে নিয়েছেন, কারণ চারপাশে করোনাভাইরাসের বৃত্ত যেন ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে আসছে। এখন আর করোনাভাইরাস শুধু টেলিভিশনের খবর নয়, শুধু পরিসংখ্যান নয়, দুরের কোন দেশ, অঞ্চল, রাস্তা বা এলাকার বিষয় নয়। এই ভাইরাস এখন নানাভাবে সবার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার অংশ। সবাই জেনে গেছে করোনাভাইরাসের কাছে শক্তিশালী ও উন্নয়নশীল দেশ, ধনী বা দরিদ্রের কোন পার্থক্য নেই। এর কোন কার্যকর চিকিৎসা নেই, টিকাও আবিষ্কার হয়নি। জোবাইদা নাসরিনের ভাষায়, "আগে করোনাভাইরাস দুরের বিষয় ছিল। আমরা বলেছি: 'তাদের, তারা।' এখন সব 'আমরা' হয়ে গেছে। শুরুতে ছিল ফিয়ার, তারপর ফোভিয়া আর এখন বাস্তবতা।" তিনি বলছেন, পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে বাংলাদেশে অঢেল অর্থের বিনিময়েও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর প্রাণ রক্ষা সম্ভব হয়নি। মন্ত্রী, সচিব থেকে শুরু করে সমাজের সকল স্তরের মানুষ সবাই সমানভাবে আক্রান্ত। সমাজের সকল স্তরের মানুষ সবাই সমানভাবে আক্রান্ত। তার মতে, "বাংলাদেশে যে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, করোনাভাইরাস আমাদের চোখের সামনে সেটা উন্মোচন করেছে। হাসপাতালে যায়গা নেই, রোগী ভর্তি না করে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে, পর্যাপ্ত আইসিইউ নেই, অক্সিজেন নেই, পরীক্ষার জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা। মানুষের মধ্যে হাহাকার তৈরি হয়েছে যে যাদের টাকা আছে তারাই বেঁচে থাকতে পারছেন না, সেখানে আমি কিভাবে বেঁচে থাকবো। এরকম পরিস্থিতিতে মানুষ নিজেকে সমর্পণ করে।" মৃত্যুভয়, ধর্মভীরুতা,পরিত্রাণের উপায় ক্লিনিকাল সাইকোলজিষ্ট ডা. ইশরাত শারমিন বলছেন, চরম দুর্দিনে মানুষের মধ্যে মৃত্যুভয়, ধর্মভীরুতা বৃদ্ধি পায়। তারা নিয়তির কাছে নিজেকে সমর্পণ করে। তার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলছেন, "যখন মানুষ অনুভব করে যে আর কোন উপায় নেই, সাহায্যের আর কোন পথ খোলা নেই, সে সম্পূর্ণ অসহায় বোধ করে, তখন সে সারেন্ডার করে, হাল ছেড়ে দেয়। তখন তারা ভাবে একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই আছেন যিনি আমাকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করতে পারে।" তিনি বলছেন, "মানুষ এই অনুভূতির সাথে খাপ খাওয়ানোর উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করে, অবলম্বন খোঁজে। কেউ ধর্মের কাছে নিজেকে সমর্পণ করে, কেউ হাল ছেড়ে দেয়, কেউ মেনে নেয়। মেনে নিয়ে মানসিক চাপ, উদ্বেগ, আশঙ্কা থেকে এক ধরনের পরিত্রাণ পায়।" তিনি বলছেন, করোনাভাইরাসের কাছে যে অসহায়ত্ব মানুষের তৈরি হয়েছে, সাহায্যের সুযোগ যেভাবে সংকুচিত হয়ে গেছে সেজন্য মানুষ বেপরোয়াও হয়ে উঠতে পার��। বাংলাদেশে মার্চ মাসে প্রথম কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর পরিস্থিতি যেমনটা ছিল তা থেকে অনেকটাই বদলে গেছে। তখন হয়ত খবরে শোনা যেত কোন এলাকার নাম যেখানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পরেছে। +text: প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা অব্যাহত টানাপড়েনের মাঝে, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আজ (মঙ্গলবার) নিশ্চিত করেছেন প্রধান বিচারপতি তার অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে সোমবার থেকে এক মাসের ছুটিতে গেছেন। বিবিসি বাংলাকে মন্ত্রী বলেন, "প্রেসিডেন্টকে লেখা চিঠিতে প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন তিনি ক্যান্সারের রোগী, আরো অন্যান্য রোগে তিনি আক্রান্ত। ফলে তার বিশ্রাম দরকার।" তবে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় দেয়ার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে সরকার এবং সরকারি দলের একাধিক নেতা যেভাবে বিচারপতি সিনহাকে সমালোচনা করেছেন, তাতে এই ছুটি নিয়ে স্বভাবতই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রেসিডেন্ট জয়নুল আবেদিন বলেছেন - প্রধান বিচারপতি ছুটি নেননি, তাকে ছুটি নিতে বাধ্য করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও বহু মানুষ অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে প্রধান বিচারপতির এই ছুটি নেওয়া নিয়ে সন্দেহ, অবিশ্বাস প্রকাশ করছেন। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক কিন্তু আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন এসব সন্দেহ একবারেই অমূলক। "অসুস্থতা সবসময় জানান দিয়ে আসেনা.. তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়নি বলে সুপ্রিম কোর্টে বিএনপির কিছু আইনজীবী চিল্লাচিল্লি করছেন, সেটা যে ভিত্তিহীন এটা আমাকে বলতেই হচ্ছে।" "এটাকে রাজনীতি-করণের কোনো কারণ নেই। ওনাদের হয়তো কোনো দুরভিসন্ধি ছিলো।" সম্ভাব্য দুরভিসন্ধি কি? বিবিসির এই প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের কিছু উদ্ধৃতি উল্লেখ করেন। "গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কি বলেছেন আজকের খবরের কাগজে আপনারা দেখেননি? তিনি বলেছেন বিএনপি ক্ষমতায় না আসতে পারলেও এই সরকারের আর বেশিদিন নেই। কি বোঝাতে চাইছেন তিনি?" সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং সরকারের কাছ থেকে প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়েছিলেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। +text: লাতিন আমেরিকায় এবং ক্যারিবিয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা সবাই জানে, কিন্তু ব্রিটেনের গোপন তৎপরতার কথা ছিল অজানা। লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের গুপ্তচর সংস্থাগুলোর তৎপরতার কথা ব্যাপকভাবে প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু সেখানে যে ব্রিটিশরাও বেশ তৎপর ছিল, সে সম্পর্কে কমই জানা যায়। ইউনিভার্সিটি অব নটিংহ্যামের প্রফেসর রোরি করম্যাক বলেন, সম্প্রতি যেসব গোপন সরকারি নথি উন্মুক্ত করা হয়েছে, তাতে দেখা যায় লাতিন আমেরিকার অনেক দেশে ব্রিটিশরা নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছে এবং ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন বিপর্যস্ত করার চেষ্টা করেছে। লাতিন আমেরিকায় কমিউনিস্টদের প্রভাব ঠেকানোর চেষ্টা করছিল ব্রিটেন ১৯৬০ এর দশকের শুরু থেকে ব্রিটেন লাতিন আমেরিকায় নাটকীয়ভাবে তাদের গোপন তৎপরতা বাড়িয়ে দেয়। সেখানে তারা 'বিশেষ রাজনৈতিক কার্যক্রমের' আওতায় প্রপাগান্ডা চালাতে শুরু করে। নানা রকম জালিয়াতিরও আশ্রয় নেয়া হয়। এর লক্ষ্য ছিল জনমত প্রভাবিত করা, বিশেষ করে কমিউনিজমের বিরুদ্ধে। "এটি বেশ অবাক করা ব্যাপার। কারণ ইতিহাসবিদরা এতদিন মনে করতেন, ব্রিটিশরা কেবল মধ্যপ্রাচ্য আর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতেই তাদের গোপন তৎপরতা চালাতো। তাদের ধারণা ছিল লাতিন আমেরিকার ব্যাপারটি ব্রিটিশরা সিআইএ'র হাতে ছেড়ে দিয়েছে", বলছেন প্রফেসর করম্যাক। 'ব্ল্যাক প্রপাগান্ডা' ১৯৬১ সালে রনি বারোজ বলে এক ব্রিটিশ কূটনীতিক ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দফতর এবং এমআই-সিক্সের হয়ে লাতিন আমেরিকা সফর করেন। লন্ডন থেকে তখন সিদ্ধান্ত নেয়া হয় লাতিন আমেরিকায় গোপন তৎপরতা বাড়ানোর। তখন সেখানে বিশেষ করে যে 'ব্ল্যাক প্রপাগান্ডা' চালানো হয়, তার পেছনে যে ব্রিটেন আছে, তা গোপন রাখা হয়েছিল। এই ব্ল্যাক প্রপাগান্ডার মাধ্যমে সেখানে এমন সব ভুয়া জিনিসপত্র তৈরি করা হতো, যারা উদ্দেশ্যই ছিল জনগণকে বিভ্রান্ত করা। আর কারা এসব প্রচারের পেছনে আছে, সেটা নিয়েও মানুষকে বিভ্রান্ত করা হতো। আরও পড়ুন: মার্কিন ভাড়াটে সেনার নেতৃত্বে একজন প্রেসিডেন্টকে ধরতে এক উদ্ভট ষড়যন্ত্র কীভাবে উৎখাত হয়েছিল ইরানের মোসাদ্দেক সরকার ফিদেল ক্যাস্ত্রোকে হত্যার বিচিত্র সব পরিকল্পনা লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে বাণজ্যি বাড়ানোর চেষ্টা করছিল ব্রিটেন তখন বিশ্বে লাতিন আমেরিকার গুরুত্ব বাড়ছিল। কিন্তু সেখানে কমিউনিস্টদের প্রভাব যে বাড়ছে ,তারও অনেক লক্ষণ দেখা যাচ্ছিল। বিশেষ করে কিউবার বিপ্লবের পর। ব্রিটেন তখন সেভাবে লাতিন আমের��কার দিকে মনোযোগ দিচ্ছিল না। সেখানে তাদের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রই সাধারণত সব কাজে নেতৃত্ব দিত। কারণ যুক্তরাষ্ট্র মনে করতো, এই এলাকায় প্রভাব খাটানোর এখতিয়ার তাদের। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রই সবচেয়ে বেশি তৎপর ছিল। কিন্তু প্রফেসর করম্যাক বলেন, ব্রিটেন তারপরও এধরণের গোপন তৎপরতায় লিপ্ত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ওপর প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে। একই সঙ্গে লাতিন আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধিও তাদের লক্ষ্য ছিল। "ব্রিটেন এসব গোপন তৎপরতা চালিয়েছে দুটি কারণে", বলছেন তিনি। "প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে একটু সুবিধা পাওয়ার জন্য, কারণ এই সম্পর্ক ক্রমশ একতরফা হয়ে পড়ছিল। দ্বিতীয়ত, ঐ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কমে যাচ্ছে বলে যে ধারণা তৈরি হয়েছিল, সেটার সুযোগ নিয়ে সেখানকার ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক বাজার দখল করতে চাইছিল ব্রিটেন। ব্রিটেনের এই দুটি উদ্দেশ্যের মধ্যে আবার অনেক সময় দ্বন্দ্ব ছিল, তারা যেন একসঙ্গে যাচ্ছিল না।" ভেনেজুয়েলাকে একটা বড় 'পুরস্কার' বলে গণ্য করছিল ব্রিটিশরা লাতিন আমেরিকায় যারা এরকম প্রপাগান্ডা চালাচ্ছিল, ব্রিটেন তাদের সংখ্যা বাড়ায়। সেখানে এমআই-সিক্সের নতুন স্টেশন খোলা হয়। এর মধ্যে চিলে এবং ভেনেজুয়েলাও ছিল। (এক ব্রিটিশ কর্মকর্তা ভেনেজুয়েলাকে এক 'বিরাট পুরস্কার' বলে বর্ণনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন "এই দেশটি বেশ সমৃদ্ধশালী এবং দেশটির সরকার বড় ধরণের বিনিয়োগের উৎস হতে পারে।") তবে ব্রিটেনের প্রধান লক্ষ্য ছিল প্রপাগান্ডা চালিয়ে কমিউনিজমকে ঠেকানো এবং সেখানে চার্চ, ট্রেড ইউনিয়ন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কাজ করা। এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কলম্বিয়ায় একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করা হয়। চিলে এবং বলিভিয়ায় ইশতেহার বিলি করা হয়। স্থানীয় রেডিও স্টেশনগুলোর প্রযোজকদের ঘুষ দেয়া হয় যাতে সেখানে এয়ারটাইম পাওয়া যায় এবং এরকম প্রপাগান্ডার উদ্দেশ্যে তৈরি টেপ বাজানো হয়। এক ব্রিটিশ কর্মকর্তা তখন গর্বভরে বলেছিলেন, "তাকে যদি এক লাখ পাউন্ড খরচ করতে দেয়া হয়, তাহলে তিনি আন্দিয়ান অঞ্চলের সব বেতার কথকদের কিনে ফেলতে পারেন।" ব্রিটেনের এই গুপ্তচররা বলিভিয়ার যাজকদের সঙ্গেও কাজ করেছেন। সেখানে তারা সোভিয়েত এবং কিউবান প্রপাগান্ডার জবাবে নানা ধরণের প্রচারপত্র বিলি করে পাল্টা প্রপাগান্ডা চালান। প্��েসিডেন্ট আরোসেমেনা কিউবার বিপ্লবের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন। ব্রিটিশরা তাকে পছন্দ করতো না। একুয়েডরেও তারা একই ধরণের তৎপরতায় লিপ্ত ছিলেন। সেখানে তারা যেসব যাজকদের সঙ্গে কাজ করেছেন, তারা প্রেসিডেন্ট কার্লোস জুলিও আরোসেমেনা মনরির বিরুদ্ধে লোক জড়ো করার ক্ষমতা রাখতো বলে মনে করা হয়। ব্রিটিশরা প্রেসিডেন্ট কার্লোস জুলিও আরোসেমেনা মনরিকে "খুবই নীতিহীন এবং অবাঞ্ছিত চরিত্র" বলে মনে করতো। প্রফেসর করম্যাক এসব বিষয়ে যে প্রবন্ধটি লিখেছেন সেটির শিরোণাম, "দ্য কারেন্সি অব কভার্ট একশন: ব্রিটিশ স্পেশাল পলিটিক্যাল একশন ইন ল্যাটিন আমেরিকা, ১৯৬১-৬৪।" এটি প্রকাশিত হয়েছে জার্নাল অব স্ট্রাটেজিক স্টাডিজে। এতে তিনি লিখেছেন, এই ব্রিটিশ গুপ্তচরদের ধারণা ছিল, এই যাজকরা চাইলে যে কোন সময় রাজধানী কিটোর রাস্তায় ৫ হাজার মানুষ জড়ো করার ক্ষমতা রাখে। বিশেষ করে ক্যাথলিক তরুণদের ওপর তাদের বেশ প্রভাব ছিল। ২০১৯ এবং ২০২০ সালে প্রকাশ করা গোপন নথিপত্রের ভিত্তিতে অধ্যাপক করম্যাক বলেন, বৃটিশ গুপ্তচররা তখন ট্রেড ইউনিয়নগুলোর মধ্যেও তাদের অনুচর ঢুকিয়ে দিয়েছিল। তারা অনেক ট্রেড ইউনিয়ন দখল করে নিয়েছিল অথবা এগুলোর সভায় বিঘ্ন ঘটাতে পেরেছিল। ১৯৬২ সালের এপ্রিলে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জোয়াও গোলা ওয়াশিংটনে জানান প্রেসিডেন্ট কেনেডির সঙ্গে দেখা করতে। কিন্তু পরে তাদের সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি হয়। ব্রাজিলের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জোয়াও গোলাকে ব্রিটিশরা টার্গেট করেছিল। ব্রিটিশরা এমন কিছু জাল কাগজ তৈরি করে যাতে দেখানো যায় কমিউনিস্টরা ট্রেড ইউনিয়নগুলো দখল করে নিয়েছে। যাতে করে প্রেসিডেন্টের মনে এমন ভয় ঢুকিয়ে দেয়া যায় যে সেখানে তার অবস্থানকে কট্টর বামপন্থীরা নাজুক করে তুলছে। তবে এই কাজটি শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশরা আর করেনি। শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট জোয়াও গোলাকে ১৯৬৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমেই ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। সালভাদর আলেন্দে ১৯৬৪ সালে চিলির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়ান, কিন্তু হেরে যান এডুয়ার্ডো ফ্রেইর কাছে। ব্রিটিশকরা কয়েকটি ঘটনায় নির্বাচনেও প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেছে। বিশেষ করে চিলেতে ১৯৬৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে। ব্রিটিশদের আশংকা ছিল সেখানে সমাজতন্ত্রী সালভাদর আলেন্দে জয়ী হতে পারেন। একটি ব্রিটিশ গোপন নথিতে এ ব্যাপারে বলা হচ্ছে, "আলেন্দে একবার ক্ষমতায় আসলে এমন সম্ভাবনা আছে যে তাকে কমিউনিস্টরা তাদের ইচ্ছেমত বা অন্য কোনভাবে পরিচালনা করতে পারবে এবং শেষ পর্যন্ত চিলিতে হয়তো কিউবার মতো একটা সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।" তবে সেখানে ব্রিটিশদের তৎপরতাকে ছাড়িয়ে যায় মার্কিনীদের কর্মকাণ্ড। সেখানে দু বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র খরচ করেছিল ৩০ লাখ ডলার, যাতে করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করা যায়। প্রফেসর করম্যাকের বিশ্লেষণ হচ্ছে, ব্রিটেন আসলে "খুব সস্তায় বিশ্বে তাদের একটা ভূমিকা বজায় রাখার জন্য" এ ধরণের গোপন তৎপরতাকে ব্যবহার করছিল। ১৯৬০ এর দশকে লাতিন আমেরিকায় ব্রিটিশ গুপ্তচর সংস্থা আগে যা দাবি করা হতো তার চেয়ে অনেক বেশি সক্রিয়ভাবে গোপন তৎপরতা চালাতো বলে জানা যাচ্ছে। +text: রোজা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম মুসলিমরা বিশ্বাস করেন- স্বেচ্ছা নিয়ন্ত্রণ আর বেশি সময় ধরে প্রার্থনার ভেতর দিয়ে মুসলমানরা এ মাসে নতুন করে আত্মশুদ্ধি অর্জনের চেষ্টা করেন। আপাতদৃষ্টিতে রোজা সহজ সরল একটি ধর্মীয় আচরণের বিষয়, কিন্তু এটি নিয়ে বেশ কিছু ভুল ধারণা বিদ্যমান যেগুলো নিয়ে মুসলিমদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। নীচে রোজা নিয়ে সেরকম ছটি খুব সাধারণ ভুল ধারণা তুলে ধরা হলো। ব্রিটেনে অ্যাডভান্সড (অগ্রসর) ইসলামি বিজ্ঞান এবং শারিয়া আইনের ছাত্র শাব্বির হাসান তার ধর্মীয় জ্ঞান প্রয়োগ করে এগুলোর বিশ্লেষণ করেছেন: মিসওয়াক ব্যবহার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও অনুমোদন করে 'দাঁত ব্রাশ করলে রোজা ভেঙ্গে যায়' অনেক মানুষ মনে করেন পেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করলে রোজা ভেঙ্গে যায়। কিন্তু ইসলামি চিন্তাবিদরা বলেন, দাঁত ব্রাশ করলে রোজা ভাঙ্গে না। শাব্বির হাসান বলেন, অনেক মানুষ অতি সাবধানী। তাদের জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছেন তিনি,- "সবচেয়ে ভালো পরামর্শ অল্প পরিমাণ পেস্ট নিন। মিন্টের গন্ধ কম এরকম পেস্ট ব্যবহার করুন।" ভয় পেলে, গাছের সরু ডাল থেকে তৈরি মিসওয়াক বা দাঁতন ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আরো পড়তে পারেন: একমাস রোজা রাখলে যা ঘটে আপনার শরীরে রোজা রেখে চুমু নিষিদ্ধ, অর্থাৎ অন্যের লালা মুখে ঢোকানো যাবেনা 'মুখের লালা পেটে ঢুকলে রোজা থাকে না' শাব্বির হাসান বলছেন, মুখের লালা পেটে ঢুকলে কোনো অসুবিধা নাই। "মুখের লালা পেটে ঢুকলে রোজা থাকে না- এই বিশ্বাসের কোনো ভিত্তি নেই, নিজের লালা গলাধঃকরণ করা খুব স্বাভাবিক একটি শারীরিক প্রক্রিয়া, এতে অবশ্যই রোজা ভাঙ্গে না।" তিনি বলেন, বরঞ্চ ইসলামে রোজার সময় মুখের লালা খাওয়া উৎসাহিত করা হয়েছে। তবে, তিনি বলেন, অন্যের মুখের লালা নিজের মুখে ঢুকলে রোজা থাকবে না। "রোজা পালনের সময় আপনি আপনার সঙ্গীকে চুম খেতে পারবেন না, অন্তরঙ্গ হওয়া যাবেনা। মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে আপনার আকাঙ্ক্ষাকে সংযত করা। সে কারণেই খাবার, পানীয় বা অন্তরঙ্গ সম্পর্ক বন্ধ রাখতে হবে।" দুর্নাম, গুজব রটালে রোজা ভেঙ্গে যেতে পারে 'শুধু খাবার অথবা পানি না খেলেই রোজা কবুল হয়ে যাবে' শুধুমাত্র খাবার মুখে দিলে বা পানি পান করলে রোজা ভেঙ্গে যাবে তাই নয়। আরো কিছু আচরণে রোজা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। মি: হাসান বলছেন, "কিছু অপরাধ জিহ্বা দিয়ে হয়...আপনি যদি দুর্নাম রটান, গুজবে অংশ নেন বা কাউকে গালিগালাজ করেন, তাহলে রোজা কবুল নাও হতে পারে।" ভুল করে খেয়ে ফেললে রোজা ভাঙবে না 'অসাবধানতা-বশত কিছু খেয়ে ফেললে রোজা ভেঙ্গে যায়' আপনি যদি সত্যিই একদম ভুলে কিছু খেয়ে ফেলেন, তাহলেও আপনার রোজা বৈধ থাকবে, যদিনা আপনি বোঝার সাথে সাথে খাওয়া বন্ধ করে দেন। কিন্তু নামাজের আগে ওজুর সময় যদি আপনি অনিচ্ছাকৃত-ভাবে পানি খেয়ে ফেলেন তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। কারণ এই ভুল এড়ানো সম্ভব। মি: হাসান বলেন, "এ কারণে রোজা রেখে অজু করার সময় গারগল না করতে পরামর্শ দেওয়া হয়। আপনি শুধু কুলি করে পানি ফেলে দিন।" অসুস্থ থাকলে রোজা রাখা আবশ্যিক নয় 'ওষুধ খাওয়া যাবে না' মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন (এমসিবি) আন্তর্জাতিক গ্লুকোমা সমিতির সাথে যৌথ একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছে- রোজা রেখেও কিছু ওষুধ ব্যবহার করা যাবে। যেমন, চোখের ড্রপ। এমসিবি বলেছে, চোখের ড্রপ, কানের ড্রপ বা ইনজেকশনে রোজা ভাঙবে না। তবে যেসব ওষুধ মুখে দিয়ে খেতে হয়, সেগুলো নিষিদ্ধ । সেহেরির আগে এবং ইফতারির পর তা খেতে হবে। মি: হাসান বলেন, "প্রথম কথা আপনি যদি অসুস্থ থাকেন, তাহলে ভাবেতে হবে আপনি রোজা আদৌ রাখবেন কিনা?" "কোরানে পরিস্কার বলা আছে, আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ মত চলুন।" অসুস্থ, অন্ত:স্বত্বা, দুর্বল, ভ্রমণকারীর জন্য রোজা আবশ্যিক নয় 'যে কোনো পরিস্থিতিতেই রোজা রাখতে হবে' ইসলামে শুধু প্রাপ্তবয়স্ক (সাধারণত ১৫ বছর) এবং সুস্থ ব্যক্তির রোজা ফরজ বা আবশ্যিক করা হয়েছে। এমসিবি বলছে - শ���শু, অসুস্থ (শারীরিক এবং মানসিক), দুর্বল, ভ্রমণকারী, অন্তঃসত্ত্বা বা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন নারীর জন্য রোজা আবশ্যিক নয়। "যদি স্বল্প সময়ের জন্য কেউ অসুস্থ হন, তাহলে সুস্থ হওয়ার পর অন্য সময়ে তিনি ভাঙ্গা রোজাগুলো পূরণ করে দিতে পারেন, " মি হাসান বলেন। "যদি দীর্ঘস্থায়ী কোনো অসুস্থতা থাকে এবং রোজা রাখা সম্ভব না হয়, তাহলে রোজার মাসের প্রতিদিন ফিদা অর্থাৎ গরীবকে কিছু দান করুন।" ব্রিটেনে এই ফিদার পরিমাণ নির্ধারিত করা হয়েছে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ পাউন্ড। এ সপ্তাহেই শুরু হচ্ছে মুসলমানের পবিত্র রমজান মাস। যারা রোজা রাখেন, তারা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কিছুই মুখে দেননা। +text: নতুন নিয়ম চালু হলে এমন ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ করতে দেখা যাবে না ফলে জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে পরিচিতি নিশ্চিত করা না গেলে আর রেল-ভ্রমণ করা যাবে না। সোমবার ২৭শে জুলাই এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে রেলওয়ে মন্ত্রণালয়। অক্টোবরের শেষ নাগাদ নতুন এ নিয়ম চালু হবে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মাহবুব কবীর। টিকেট কাটা রেলওয়ে বলছে, টিকেট কালোবাজারি বন্ধ এবং ভ্রমণের সময় যাত্রীর পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য এ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। নতুন পরিকল্পনায় একজন যাত্রীকে রেলওয়ের ওয়েবসাইটে নিজের ন্যাশনাল আইডি কার্ড অর্থাৎ জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তার ফলে একজন ব্যক্তি রেজিস্ট্রেশন করার সাথে সাথে তার ছবি এবং পরিচিতি যেটা জাতীয় পরিচয়পত্র সার্ভারে দেয়া আছে, সেটা রেলের সার্ভারে চলে আসবে। এজন্য রেলওয়ে মন্ত্রণালয় অগাস্ট মাসে নির্বাচন কমিশনের আওতায় জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্পের সঙ্গে রেলওয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করবে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত সচিব মি. কবীর। এখন রেলওয়ের টিকেট কাটার অ্যাপসে যারা আগে থেকে রেজিস্ট্রেশন করেছেন তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নতুন ব্যবস্থায় যুক্ত হয়ে যাবেন। তাদের নতুন করে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে না। মি. কবীর বলছিলেন, নতুন ব্যবস্থার একটি নামকরণ করেছে রেলওয়ে---'টিকিট যার, ভ্রমণ তার'। "নতুন নিয়মে একজন যাত্রী তার রেজিস্ট্রেশন করা আইডি থেকে নিজের নামে বা পরিবার বা বন্ধু অর্থাৎ যারা তার ভ্রমণসঙ্গী হবেন - তাদের নামে চারটি পর্যন্ত টিকেট কাটতে পারবেন। যাত্রাকালে ট্রেন�� চেকার তার কাছে থাকা স্মার্টফোন বা ট্যাবে রেলের সার্ভারে থাকা যাত্রীর নাম-পরিচয়ের সঙ্গে টিকেটে থাকা নাম-পরিচয় মিলিয়ে দেখবেন, অর্থাৎ যার নামে টিকেট তাকে ভ্রমণ করতে হবে, এবং যাত্রাকালে 'অন বোর্ড' নিজের পরিচয় নিশ্চিত করতে হবে।" এতে যাত্রীর স্মার্টফোন থাকার প্রয়োজন নেই, কিংবা তাকে জাতীয় পরিচয়পত্রও বহন করতে হবে না। আরো পড়তে পারেন: 'পাথর লাগলো কপালে, জখম অবস্থায় বাসায় আসলাম' ট্রেনের ছাদে উঠলে ছাড় নেই, রোববার থেকে কড়া দৃষ্টি বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে শিলিগুড়ি যাবে ভারতের ট্রেন মি. কবীরের কাছে প্রশ্ন ছিল, যাদের এনআইডি নেই - তাদের ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা হবে। জবাবে তিনি বলেছেন, "এখন তো ১৬ বছর বয়সী পর্যন্ত অর্থাৎ ২০০৪ সালে যারা জন্ম গ্রহণ করেছে, তাদের পর্যন্ত তথ্য আছে। ওই বয়স পর্যন্ত জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলেও একটি রেজিস্টার্ড আইডি নম্বর থাকে - সেটি দিয়ে তারা টিকেট কাটতে পারবে।" কিন্তু ১৬ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে কী হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে, যেহেতু ১২ বছর বয়স হলেই রেলের টিকেট কাটা যায়, সেক্ষেত্রে রেলওয়ের পরিকল্পনা হচ্ছে জন্মসনদ দিয়ে টিকেট কাটার ব্যবস্থা করা। অনেক সময় ভাসমান বিভিন্ন পেশায় থাকা নিম্ন আয়ের অনেক মানুষ যাদের এনআইডি নাই, নতুন ব্যবস্থা চালু হলে তারা আর রেল ভ্রমণ করতে পারবেন না। মি. কবীর বলেছেন, এখন দুয়েকটি ধাপে পাইলট করে অক্টোবরের শেষ নাগাদ এই ব্যবস্থা চালু করে দেয়া যাবে। অনলাইন রিফান্ড অগাস্টের মাঝামাঝি চালু হবে নতুন এ ব্যবস্থা। এর ফলে একজন যাত্রী অনলাইনে টিকেট কাটার পর যদি সেটি পরিবর্তন করেন বা যাত্রা বাতিল করতে চান, তাহলে তিনি টিকেট ফেরত দিয়ে অনলাইনেই অর্থ ফেরত পাবেন। রেলপথে যোগাযোগ তুলনামূলক কম ব্যয়বহুল এখন টিকেট ফেরতের অর্থ পেতে একজন যাত্রীকে কাউন্টারে আসতে হয়। রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মাহবুব কবীর জানিয়েছেন, এটিও রেলওয়ে টিকেটিং ব্যবস্থা আধুনিকায়নের একটি অংশ। এছাড়া ট্রেন স্টেশনগুলোতে কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার পরিকল্পনা করছে মন্ত্রণালয়, যাতে টিকেট ছাড়া কেউ স্টেশন চত্বরে প্রবেশ করতে না পারে। মি. কবীর জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই রেলের স্ট্যান্ডিং টিকেট দেয়া বন্ধ করা হয়েছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: করোনাভাইরাস আর বন্যা: দুই দুর্যোগের ক��লে অর্ধকোটি মানুষ কাবুল থেকে উড়িয়ে এনে শিখ ও হিন্দুদের আশ্রয় দিল ভারত করোনাভাইরাসের মধ্যেও থেমে নেই 'বন্দুকযুদ্ধে' মৃত্যুর ঘটনা রেল ভ্রমণের জন্য টিকেট কাটার নতুন পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। নতুন নিয়মে জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া টিকেট কেনা যাবে না। +text: মাথায় বাক্স পরা অবস্থায় পরীক্ষা দিচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, নকল ঠেকানোর জন্যই এই অভিনব পন্থা অবলম্বন করেছিলেন তারা। কর্ণাটক রাজ্যের হাভেরিতে ভগৎ প্রি-ইউনিভার্সিটি কলেজে সম্প্রতি রসায়নের পরীক্ষা চলার সময় এ দৃশ্যের অবতারণা হয়। এতে দেখা যায় শিক্ষার্থীরা কার্ডবোর্ডের বাক্স - যার সামনের দিকটা চারকোণা করে কাটা - তা মাথায় পরে পরীক্ষা দিচ্ছে, যাতে সে অন্য পরীক্ষার্থীরা খাতায় কি লিখছে তা দেখতে বা নকল করতে না পারে। একজন কর্মকর্তা এ ব্যাপারে সংবাদ মাধ্যমে কথা বলেছেন এবং দু:খ প্রকাশ করেছেন। এম বি সতীশ নামের ওই কর্মকর্তা বলেন, একটি অভিনব নকল-বিরোধী টেকনিক ব্যবহারের জন্য তিনি দু:খিত। আরো পড়তে পারেন: কেনিয়ায় পরীক্ষায় নকল ঠেকাতে ক্লিপবোর্ড নিষিদ্ধ ভারতে নকল রোধের স্বার্থে নগ্ন হয়ে পরীক্ষা পরীক্ষায় নকল ও প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে ফেসবুক বন্ধ কলেজ কর্তৃপক্ষ এ জন্য দু:খ প্রকাশ করেছে তিনি আরো জানান, অন্য কোথাও কোথাও এ পদ্ধতি ব্যবহার হয়েছে এ কথা শোনার পর 'পরীক্ষামূলক ভিত্তিতে' তারা এ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তার কথায়, ছাত্রদের অনুমতি নিয়েই এটা করা হয়েছিল এবং অনেক ছাত্রই তাদের নিজেদের বাক্স নিজেরাই নিয়ে এসেছিল। "কাউকে জোর করা হয় নি। কেউ কেউ ১৫ মিনিট পরই বাক্সটি খুলে ফেলে, কেউ ২০ মিনিট পর। আমরা নিজেরাই ১ ঘন্টা পর বাক্স খুলে ফেলতে বলেছিলাম। তবে শিক্ষা বোর্ডের একজন কর্মকর্তা এস সি পীরজাদে বলেছেন, এ পদ্ধতি অমানবিক। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে তিনি বলেন, "আমি এ খবর দেখেই ওই কলেজে যাই, কর্তৃপক্ষকে এটা বন্ধ করতে বলি, এবং তাদের একটা নোটিশ দেই। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার কথাও ভাবা হচ্ছে।" বিবিসি বাংলায় আরো খবর: ফেসবুক-মেসেঞ্জার হ্যাক হওয়া ঠেকাবেন যেভাবে ভোলায় হিন্দুদের বাড়ি, মন্দিরে হামলার ঘটনাও ঘটেছিল ক্রিকেটারদের ধর্মঘট ষড়যন্ত্রের অংশ - পাপন ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের একটি কলেজে ছাত্রছাত্রীরা মাথায় কার্ডবোর্ডের বাক্স পরা অবস্থায় পরীক্ষা দিচ্ছে - এরকম একটি অদ্ভূত ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল হবার পর কর্তৃপক্ষ দু:খ প্রকাশ করেছে। +text: সারাভানা ভবন রেস্টুরেন্টের মালিক পি রাজাগোপালের ছবি তার রেস্টুরেন্টের মেন্যুতে। ৭১ বছর বয়সী পি রাজাগোপাল তার এক কর্মীকে হত্যা করার আদেশ দেন, কারণ তিনি ঐ কর্মীর স্ত্রী'কে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। ২০০৯ সালে মি. রাজাগোপালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি দেয়ার পর থেকে তিনি এই সাজা কমানোর চেষ্টা করে আসছেন। মঙ্গলবার সবশেষ আবেদনে স্বাস্থ্যজনিত কারণ দেখিয়ে আবেদন করলে সেটিও নাকচ হয়ে যায়। বিশ্বব্যাপী সারাভানা ভবন'এর ৮০টি শাখা এবং কয়েক হাজার কর্মী রয়েছে। মি. রাজাগোপালের রেস্টুরেন্টের একটি দক্ষিণ ভারতীয় খাবারের নামানুসারে তাকে 'দোসা কিং' বা দোসা'র রাজা বলে ডাকা হতো। নিউ ইয়র্ক, সিডনি, লন্ডনের মত শহরে তার খাবারের দোকানের শাখা রয়েছে। একজন জ্যোতিষীর উপদেশ অনুযায়ী নিজের একজন কর্মচারীর স্ত্রী'কে বিয়ে করার জন্য উদ্যত হন রেস্টুরেন্ট মালিক মি. রাজাগোপাল। স্থানীয় এক সাংবাদিক সুরেশ কুমার সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানান, "ঐ নারীর জন্য তিনি পাগল ছিলেন।" ২০০৩ সালে ঐ নারীকে প্রলোভন দেখানো এবং ঐ নারীর পরিবারকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করার অভিযোগ ওঠায় কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েন মি. রাজাগোপাল। সেসময় ঐ নারীর ভাইকে নির্যাতনের অভিযোগও ওঠে তার বিরুদ্ধে। ২০০১ সালে ঐ নারীর স্বামীকে খুঁজে পাওয়া না গেলে রাজাগোপালের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেন ঐ নারী। পরে একটি জঙ্গলে ঐ নারীর স্বামীর মরদেহ পাওয়া যায় এবং পুলিশ নিশ্চিত করে যে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ২০০৪ সালে একটি স্থানীয় আদালত মি. রাজাগোপালকে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়। পরে চেন্নাইয়ের হাইকোর্ট ২০০৯ সালে তার শাস্তি বাড়িয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এবছরের মার্চে সুপ্রিম কোর্ট মি. রাজাগোপালের দণ্ডাদেশ বহাল রাখেন। মঙ্গলবার অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে করা মি. রাজাগোপালের শেষ আবেদন বাতিল হলে তিনি চেন্নাইয়ের আাদালতে নিজেকে সমর্পণ করেন। আরো পড়তে পারেন: পদ্মা সেতু তৈরিতে মানুষের মাথা লাগার গুজব কেন? নতুন নিষেধাজ্ঞার কবলে পাকিস্তানের গণমাধ্যম ভারতকে আঘাত হানতে আল-জাওয়াহিরির বার্তা বৈশ্বিক রেস্টুরেন্ট চেইন 'সারাভানা ভবন' এর কর্ণধার তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশের বিরু���্ধে শেষ দফা আবেদন করেও ব্যর্থ হয়েছেন। +text: বিভিন্ন সময়ে অভিযুক্ত হয়েছেন সালমান খান তাই গতকালের মতো আজ রাতেও সালমান খানকে রাজস্থানের যোধপুর জেলেই কাটাতে হবে। আদালত ১৯৯৮ সালে দুটি কৃষ্ণসার প্রজাতির হরিণ শিকার মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচ বছরের জেল দিয়েছে । এর আগেও জেল খেটেছেন তিনি। এই দফায় গতকালই ছিলো প্রথম রাত। জেলের কর্মকর্তারা বলছেন, গতকাল থেকে জেলের খাবার মুখেই তোলেন নি সালমান খান। না খেয়েছেন রাতে, না ছুঁয়ে দেখেছেন আজকের সকালের নাস্তাও। যোধপুর জেলের সুপারিন্টেনডেন্ট বিক্রম সিংকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, "গত রাতে অন্যান্য কয়েদিদের মতোই এই সুপারস্টারকেও রুটি আর ডাল দেওয়া হয়েছিল। আজ সকালে জলখাবারে ছিল খিচুড়ি। কোনটাই তিনি মুখে তোলেন নি।" কোটি কোটি মানুষের প্রিয় এই অভিনেতাকে অবশ্য কোন বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না জেলে। আরো পড়ুন: ব্রিটেনে মুসলিমবিরোধী প্রচারণায় মসজিদ গীর্জার বিভ্রান্তিকর তথ্য বেপরোয়া জীবনযাপন করা সুপারস্টার বলিউডের সালমান খান পাকিস্তান কি এখন নিরাপদ পরিবেশ ফিরে পেয়েছে? ব্রিটেন আগুন নিয়ে খেলছে: রাশিয়া বিক্রম সিং জানিয়েছেন, সাধারণ কয়েদিদের মতোই রাখা হচ্ছে তাকে। তার কয়েদি নম্বর ১০৬। যে দুই নম্বর ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে এই সুপারস্টারকে, সেখানেই আছেন ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত স্বঘোষিত গুরু আসারাম বাপু। দু'জনের কুঠরির মধ্যে শুধু একটা পর্দা দেওয়া। রাতে জেলের মেঝেতে একটা কম্বল পেতে শুয়েছিলেন তিনি, যদিও ওই স্বঘোষিত গুরু আসারাম বাপু সালমান খানকে নিজের গদিটা ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন, এমনটাই খবর দিয়েছে ভারতের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। এই যোধপুর জেলেই তিনবার থেকে গেছেন তিনি। মোট ১৮ দিন জেলে থাকতে হয়েছিল। চিংকার রাজস্থানের বিশনয় সম্প্রদায়ের কাছে পবিত্র বন্যপ্রাণী যোধপুর থেকে বিবিসি সংবাদদাতা নারায়ণ বারেঠ জানাচ্ছেন, যে কৃষ্ণসার হরিণ শিকার মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে তাকে গতকাল পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের যে আদেশ দিয়েছিল রাজস্থানের আদালত, সেই শাস্তির ওপরে তিনি এখনও জামিন পান নি। জেলা সেশন্স কোর্টে জামিনের আবেদন জানানো হলেও তার শুনানি শেষ হয় নি। নিম্ন আদালত থেকে সব নথি সেশন্স কোর্টে এসে পৌঁছায় নি। শনিবার নথি এলে তবেই আবারও শুনানির পরে আদেশ দেবেন বিচারক। এদি���ে বলিউডের এই সুপারস্টারকে জেলে যেতে হওয়ায় অনেকেই তার প্রতি সহানুভূতি দেখাচ্ছেন সামাজিক মাধ্যমে । তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন যেমন চলচ্চিত্র জগতের রথী মহারথীরা, তেমনই আছেন অগণিত ভক্তকুলও। অন্যদিকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণবাদীরা দাবী করছেন সর্বোচ্চ সাজাই হওয়া উচিত ছিল তার। যে কৃষ্ণসার হরিণ শিকারে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, সেটি বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী এবং বন্যপ্রাণী রক্ষা আইনের একনম্বর তফসিলে অন্তর্ভুক্ত। এই দোষে সর্বোচ্চ সাজা ৬ বছরের। বলিউড তারকা সালমান খানের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হওয়ার পর আজ তার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেছিলেন, কিন্তু তার শুনানি শেষ হয় নি। আগামীকাল হয়তো বিচারকের আদেশ শোনা যাবে। +text: অবসাদ নিরাময়ে কার্যকর অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্ট সোয়া এক লক্ষেরও বেশি মানুষের ওপর ৫২২টি পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে যে সাধারণ ঔষধের তুলনায ২১টি প্রচলিত অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্ট তীব্র অবসাদ দূর করতে সক্ষম। এ ধরনের ওষুধের দ্বারা আরও অনেক মানুষ উপকৃত হতে পারেন বলে স্বাস্থ্যবিষয়ক ম্যাগাজিন 'ল্যানসেট'-এ প্রকাশিত হওয়া এই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়। ইংল্যান্ডে ২০১৬ সালে এসব ওষুধের জন্য ছয় কোটি ৪৭ লক্ষ প্রেসক্রিপশন দেয়া হয়, যা ২০০৬ সালের তিন কোটি ১০ লক্ষ ব্যবস্থাপত্রের দ্বিগুণেরও বেশি। রয়্যাল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিস্টস বলেছে, এই গবেষণা "অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্ট সংক্রান্ত বিতর্কের অবসান" ঘটিয়েছে। গবেষণায় ব্যবহৃত ৫২২টি পরীক্ষা ছাড়াও অপ্রকাশিত বেশকিছু পরীক্ষার তথ্য সংযুক্ত করা হয়, যা থেকে প্রমাণিত হয় প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে তীব্র অবসাদ দূর করতে অন্য যেকোনো চিকিৎসাপদ্ধতির চেয়ে অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্ট বেশি কার্যকর। গবেষণা দলের প্রধান ও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. আন্দ্রেয়া সিপ্রিয়ানি বিবিসি'কে বলেন, "অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্ট কাজ করে কি-না, তা নিয়ে লম্বা সময় ধরে চলা বিতর্কের চূড়ান্ত সমাধান এই গবেষণা। " "সাধারণভাবে সুপারিশ করা অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্ট মাঝারি থেকে তীব্র অবসাদ নিরাময়ের ক্ষেত্রে কাজ করে, আর আমি মনে করি এটি রোগী ও চিকিৎসকদের জন্য খুবই ভাল খবর।" কার্যকারিতার বিচারে অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্ট বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সবচেয়ে বেশী কার্যকরী সবচেয়ে কম কার্যকরী নির্ভরযোগ্য প্রমাণ গবেষকরা বলেছেন এই গবেষণায় আবিষ্কৃত তথ্যের ভিত্তিতে চিকিৎসকরা রোগীদের সঠিক ওষুধ দিতে পারবেন। তবে তার অর্থ এই নয় যে সবারই ওষুধ পরিবর্তন করতে হবে। এর কারণ এই গবেষণায় বিভিন্ন বয়স ও লিঙ্গের ভিত্তিতে অবসাদের ধরন বিচার না করে ব্যক্তির ওপরে ওষুধের গড় প্রতিক্রিয়া বিচার করা হয়েছে। গবেষকরা বলেন, প্রাথমিক বিশ্লেষণের অধিকাংশ উপাত্তই আট সপ্তাহের চিকিৎসার ওপর ভিত্তি করে পাওয়া তথ্যের ওপর নির্ভর করে নেয়া হয়েছে। কাজেই দীর্ঘ সময় ধরে চলা অবসাদের ক্ষেত্রে এটি কার্যকর নাও হতে পারে। তাঁরা আরও বলেছেন, অবসাদ নিরাময়ের ক্ষেত্রে অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্টই প্রথম চিকিৎসা হওয়া উচিত - বিষয়টি এমন নাও হতে পারে। ডা. সিপ্রিয়ানি বলেন, "যখন মানসিক চিকিৎসার মত কোন পদ্ধতি ব্যবহারের সুযোগ থাকে, তখন ওষুধ গ্রহণের বিষয়টি সবসময়ই এর পাশাপাশি বিবেচনায় নেয়া উচিত।" রয়্যাল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিস্টস-এর প্রফেসর কার্মাইন প্যারিয়ান্তে বলেন, "এই প্রাথমিক বিশ্লেষণে অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্ট বিষয়ক প্রচলিত বিতর্কের অবসান হয়েছে। এই গবেষণায় পরিস্কারভাবে প্রমাণিত হয় এসব ওষুধ অবসাদ নিরাময় ও মনোভাব পরিবর্তনে সহায়ক।" "ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির কাছে থাকা অপ্রকাশিত তথ্য পর্যালোচনা করা হয়েছে এই গবেষণায়। কাজেই এই গবেষণায় উঠে আসা তথ্য ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো দ্বারা প্রভাবিত হবে না।" ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের সাইকিয়াট্রিক এপিডেমোলজির প্রফেসর গ্লিন লেউইসের মতে এই গবেষণা অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্টের কার্যকারিতার স্বপক্ষে "নির্ভরযোগ্য প্রমাণ" উপস্থাপন করেছে। তিনি আরো বলেন, "অ্যান্টি ডিপ্রেসান্ট মাঝেমধ্যে গণমাধ্যমে সমালোচিত হলেও এই গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে অবসাদগ্রস্ত মানুষের জন্য এটি কার্যকর।" বিজ্ঞানীরা বলছেন, চিকিৎসাশাস্ত্রের অন্যতম একটি প্রধান বিতর্কের অবসান ঘটিয়েছেন তাঁরা। গবেষণায় উঠে এসেছে যে অবসাদ নিরাময়কারী (অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্ট) ওষুধ অবসন্নতা দূর করতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। +text: আড্রিয়েল হ্যাম্পটন, মার্কিন অ্যাক্টিভিস্ট যিনি সম্প্রতি রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন তাহলে রাজনীতিবিদ হয়ে যান। এমনটাই বলছেন এক মার্কিন অ্যাক্টিভিস্ট। রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন বা তথ্য প্রচারের বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুকের নীতিকে চ্যালেঞ্জ করতে যিনি চরম পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। সান ফ্রান্সিসকোর বাসিন্দা আড্রিয়েল হ্যাম্পটন ফেসবুকের রাজনৈতিক প্রচারণাকে যাচাই বাছাই ছাড়া প্রচারের নীতিকে সামনে আনতে চান। তবে রাজনীতিবিদ ছাড়া অন্য ব্যবহারকারীদের তথ্য প্রচারের ক্ষেত্রে তা যাচাই করে থাকে ফেসবুক। ২০২২ সালের গভর্নর নির্বাচনের অনেক আগেই ক্যালিফোর্নিয়া গভর্নর পদে প্রার্থী হিসেবে রেজিস্টার করেছেন হ্যাম্পটন। যাতে করে সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে নিজের মিথ্যা বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারেন তিনি। আরো পড়ুন: সরকারের নিয়ন্ত্রণ চেয়ে ফেসবুকের যত সুপারিশ মার্কিন সিনেটরদের তোপের মুখে জাকারবার্গ রোহিঙ্গা সহিংসতায় দায় স্বীকার করলো ফেসবুক "এই প্রচারণার উদ্দেশ্য সামাজিক মাধ্যমের নীতিমালা এবং এটা নিশ্চিত করা যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো রাজনীতিবিদরা যারা অনলাইনে মিথ্যা বলতে পছন্দ করেন তারা যাতে কোন ছাড় না পান," সিএনএন বিজনেসকে তিনি এ কথা বলেন। কিন্তু ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এই অ্যাক্টিভিস্টকে তার মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর সুযোগ দিতে রাজি নয়। 'রুখে দাঁড়াও' ফেসুবকের এই নীতি রাজনীতিবিদদের যাচাই বাছাই এড়ানোর সুযোগ করে দেয় হ্যাম্পটন দ্য রিয়েলি অনলাইন লেফ্টি লীগের একজন সদস্য। যারা নিজেদেরকে "৯৯ শতাংশের জন্য ডিজিটাল-ফার্স্ট রাজনৈতিক কমিটি" বলে বর্ণনা করে। তারা বলেন, তাদের লক্ষ্য হচ্ছে রক্ষণশীল রাজনৈতিক শক্তিকে রুখে দেয়া যারা বড় অর্থের বিনিময়ে অনলাইনে নানা ধরণের কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জন করেছে। "রাশিয়ার ইন্টারনেট গবেষণা সংস্থা থেকে শুরু করে ট্রাম্পের ডিজিটাল ব্রেইন ট্রাস্টের মতো রক্ষণশীল এবং উচ্ছৃঙ্খল এজেন্টরা অনলাইন মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করে। আমরা এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছি," এর ওয়েবসাইটে বলা হয় এবং হ্যাম্পটন মনে করেন যে, প্রতিরোধ গড়ে তোলার একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র এটি। সিএনএন বিজনেসকে তিনি বলেন, "আমি মনে করি সোশ্যাল মিডিয়া অত্যন্ত শক্তিশালী। আমার বিশ্বাস নির্বাচন পাল্টে দেয়ার মতো ক্ষমতা আছে ফেসবুকের।" চাপের মুখে ফেসবুক নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন বিষয়ে ফেসবুকের নীতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে মার্ক জাকারবার্গকে উদ্দেশ্য করে ফেসবুকের দুই শতাধিক কর্মীর লেখা ও স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দেয়ার পর হ্যাম্পটনের এই পদক্ষেপ আসলো। "মুক্ত বক্তব্য এবং টাকার বিনিময়ে বক্তব্য এক বিষয় নয়," চিঠিতে বলা হয়। "রাজনীতিতে রয়েছেন বা রাজনীতি আসার জন্য নির্বাচন করছেন এমন ব্যক্তিদের বিষয়ে ফ্যাক্ট চেকিং বিষয়ক আমাদের নীতি ফেসবুকের আদর্শের প্রতি হুমকি।" ফেসবুকের নীতিকে সমর্থন করেছেন জাকারবার্গ, বলেছেন, মুক্ত রাজনৈতিক বক্তব্যে বাধা দিতে চান না তিনি এর কয়েক ঘণ্টা পরে সেনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটির সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ ডেমোক্রেট সেনেটর মার্ক ওয়ার্নার জাকারবার্গকে উদ্দেশ্য করে আরেকটি চিঠি লেখেন। এতে তিনি হুশিয়ার করে বলেন ফেসবুকের এই নীতি মার্কিন রাজনীতিতে থাকা "স্বচ্ছতা, জন সচেতনতা ও বিতর্ক, সরলতা, মতের বৈচিত্র্য এবং জবাবদিহিতাকে" ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেবে। ২৩ অক্টোবর কংগ্রেসের জিজ্ঞাসাবাদে জাকারবার্গ স্বীকার করেছেন যে এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে তৈরি করা একটি বিজ্ঞাপন হয়তো ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছিল। যদিও দ্য রিয়েলি অনলাইন লেফ্টি লীগের একটি ভুয়া বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, শীর্ষ এক রিপাবলিকান সদস্য যুক্তরাষ্ট্রে পরিবেশ বিষয়ক প্রস্তাবনায় সমর্থন দিয়েছেন-সেটি সরিয়ে নিয়েছে ফেসবুক। বিশেষ করে হ্যাম্পটনের এই ভুয়া বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে ফেসবুক বলেছে, একটি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে আসার কারণেই ফ্যাক্ট-চেকিংয়ের আওতায় পড়েছে ওই বিজ্ঞাপন। আদালতে মামলা? এখন হ্যাম্পটন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে ফেসবুকে বলছে, তারপরও তারা ফ্যাক্ট-চেক করবে এবং সম্ভবত তার রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা হবে। ধারণা করা হচ্ছে বিষয়টি শেষ পর্যন্ত আদালতে গড়াবে। ডেমোক্রেটিক প্রতিনিধি আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ জাকারবার্গকে জিজ্ঞাসা করেন যে, কোন রাজনীতিবিদের মিথ্যা প্রচার যাচাই করা ছাড়াই ফেসবুকে প্রচার করা যাবে কিনা মঙ্গলবার সন্ধ্যায়, ফেসবুকের এক মুখপাত্র সিএনএন বিজনেসকে বলেন: "এই ব্যক্তি পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, আমাদের নীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই প্রার্থী হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করেছেন। আর তাই তার সব আধেয় বা তথ্য, বিজ্ঞাপন সবই তৃতীয় পক্ষের যাচাই বাছাইয়ের আওতায় পড়বে।" এর প্রতিক্রিয়ায় হ্যাম্পটন বলেছেন যে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করার চিন্তা করছেন কারণ এটি "শুধু আমার জন্য একট�� নীতি বানিয়েছে।" ফেসবুক নিয়ে যখন এধরণের ঘটনা ঘটে চলেছে, তখন ফার্মটি তাদের নিজেদের নীতির পক্ষে সাফাই দিয়ে বলেছে, তারা রাজনৈতিক বক্তব্যের বিষয়ে লাগাম টানতে চায় না। মঙ্গলবার ফেসবুকের দুই জন জ্যেষ্ঠ পরিচালক, যার মধ্যে ফার্মটির বৈশ্বিক নির্বাচন বিষয়ক পরিচালক কেটি হার্বাথও রয়েছেন, তারা একটি বিবৃতিতে সই করেছেন যা ইউএসএ টুডে নামে একটি সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে, "ফেসবুকের উচিত নয় নির্বাচনী প্রার্থীদের বিজ্ঞাপনে সত্য তথ্য প্রচারে বিষয়ে গেট কিপারের দায়িত্ব পালন করা।" তারা লেখেন: "যারা চান যে রাজনীতিবিদদের কোন বক্তব্য সঠিক তা ফেসবুক সিদ্ধান্ত নিক - তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, নিজেদেরকে প্রশ্ন করুন যে ফেসবুককে এতো ক্ষমতা আপনারা কেন দিতে চান?" বিবিসি বাংলার আরো খবর পড়ুন: সাকিব-তদন্তে সম্মতি দিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়ে মেয়েদের ভোগান্তি 'সাকিব না থাকায় বাংলাদেশের ভালো খারাপ দুটোই হতে পারে' সামাজিক মাধ্যমে কি মিথ্যা বিজ্ঞাপন বা তথ্য প্রচার করতে চান? +text: একটি চীনা কোম্পানি অবশেষে দুই দেশের নেতারা এই যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। চীনা নেতারা এই চুক্তিকে বলছেন 'উইন-উইন'। আর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলছেন, চুক্তি মার্কিন অর্থনীতিতে 'পরিবর্তন ঘটাবে'। কিন্তু এই দু'বছরের বাণিজ্য আলোচনা, যা ছিলো দেশ দুটির জন্য রোলার কোস্টারের মতো, যা শেষ পর্যন্ত একটি জায়গায় এসে থামতে পেরেছে। ফল যাই হোক, এই বাণিজ্য যুদ্ধ চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্ক এমনকি বিশ্ব অর্থনীতির গতি প্রকৃতির নতুন রূপ দিয়েছে নিঃসন্দেহে। এই সময়ে কি কি পরিবর্তন এসেছে? বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্কোর কার্ড হিসেবে দেখেছেন বাণিজ্য ঘাটতিকে এবং তিনি বিশ্বাস করেন শুল্ক যুদ্ধ চীনের সাথে তার দেশে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে পারে। হ্যাঁ তাই হয়েছে। বাণিজ্য যুদ্ধ শুরুর পর দু'দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি অনেক কমেছে, যদিও এখনও তা অনেক বেশি আছে। গত বছর নভেম্বর পর্যন্ত এক বছরে আগের বছরের চেয়ে ঘাটতি কমেছে প্রায় ছয় হাজার কোটি ডলার এবং এখন এ ঘাটতির পরিমাণ ছত্রিশ হাজার কোটি ডলার। তবে এ ঘাটতি কমানোর মূল্য স্বরূপ দু দেশের মধ্যে বাণিজ্য কমেছে প্রায় দশ হাজার কোটি ডলারের। কমেছে চীনের প্রবৃদ্ধিও চীনে মার্কিন কৃষিপণ্য রপ্তানি কমেছে ট্রাম্পের শুল্ক ব্যবস্থায় প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে চীন আর তার সবচাইতে বড় আঘাত এসে পড়েছে মার্কিন কৃষকদের ওপরেই। কারণ চীনে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিজাত রপ্তানি আড়াই হাজার কোটি ডলার থেকে কমে এখন সাতশ কোটি ডলারের নীচে। এটাই সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে কম। কিন্তু চীনের কৃষি শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে বড় সমস্যা তৈরি করেছে কিনা তা নিশ্চিত না। কারণ দেশটিতে কৃষকের সংখ্যা খুব বেশি নয় আবার সরকার ক্ষতি নিরসনে কৃষিখাতে প্রচুর ভর্তুকি দিয়ে থাকে। হ্রাস পেয়েছে চীনা বিনিয়োগ যদিও চীনে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ অনেকটাই স্থিতিশীল ছিলো এই বাণিজ্য যুদ্ধের সময়েও, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে চীনা বিনিয়োগ কমেছে ব্যাপকভাবে। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিঙ্কট্যাংক আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইন্সটিটিউটের হিসেবে, যুক্তরাষ্ট্রে চীনা কোম্পানির বিনিয়োগ ২০১৬ সালে ছিলো পাঁচ হাজার চারশ কোটি ডলার আর ২০১৮ সালে এটি হয়েছে নয়শ সাত কোটি ডলার। আর ২০১৯ সালের প্রথম অর্ধেকে এটা ছিলো মাত্র আড়াইশ কোটি ডলার। চীনা কোম্পানিগুলো বাণিজ্য নিয়ে উত্তেজনাকে নিয়ে তৈরি হওয়া উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে বিনিয়োগে অনিচ্ছা প্রকাশ করে। এছাড়া বিনিয়োগকে কঠোর নিরীক্ষার আওতায় আনার যুক্তরাষ্ট্রর নীতি ও চীনের মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ শক্ত করাও ছিলো এর উল্লেখযোগ্য কারণ। চীনে যুক্তরাষ্ট্রে কৃষিজাত পণ্যের রপ্তানি ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে তমসাচ্ছন্ন বাণিজ্য পরিবেশ যদিও বিনিয়োগ এখনো হচ্ছে, কিন্তু আমেরিকান যেসব কোম্পানি চীনে কাজ করছে তারা বলছে, দু'দেশের মধ্যকার বাণিজ্য উত্তেজনা তাদের বেশি উদ্বেগের কারণ। ইউএস চায়না বিজনেস কাউন্সিলের হিসেবে চীনে যেসব আমেরিকান উদ্যোক্তা কাজ করছে তাদের মধ্যে ৮১% মনে করেন বাণিজ্য যুদ্ধ তাদের ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। অথচ ২০১৭ সালে মাত্র ৪৫% আমেরিকান কোম্পানির এ ধরণের ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ ছিলো। চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্ব অর্থনীতির জন্য বড় ধাক্কা যুক্তরাষ্ট্রের আশংকা তাদের প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশার চেয়ে তিন শতাংশ কম হবে এবং এর একটি বড় কারণ বাণিজ্য যুদ্ধ। বিশ্লেষকরা বলছেন এর পুরো প্রভাব বুঝতে কয়েক বছর সময় লেগে যাবে। চীনের প্রবৃদ্ধিও নিম্নমুখী। ২০২০ সালে দেশটির প্রবৃদ্ধি আগের বছরের তুলনায় ৬% কমতে পারে বলে বলছে বিশ্বব্যাংক। তিন দশকের মধ্যে এটাই হবে সবচেয়ে কম। আবার দুটি বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তির মধ্যকার এ লড়াইয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিশ্ব অর্থনীতিও। আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ক্রিস্টালিনা জিওরগিয়েভা বলেছেন, "এই যুদ্ধে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে'। তবে চীন ছাড়াও অন্য বাণিজ্য অংশীদারদের সাথেও বাণিজ্য চুক্তিগুলো নিয়ে আলোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব বাণিজ্য দ্বন্দ্বের কারণে আইএমএফ বলছে ২০১৯ সালের প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশা ৩% কমিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বিচ্ছিন্নতার লক্ষ্মণ একটি বাণিজ্য চুক্তি সত্ত্বেও বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যকার প্রযুক্তিগত বিচ্ছিন্নতার ঝুঁকি বাড়ছে। চীনা টেলিকম কোম্পানি হুয়াওয়ে ও আরও কিছু কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো তাদের সাথে ব্যবসা করতে পারছেনা। আবার বেইজিংও একই ধরণের কালো তালিকা করেছে। মনে করা হচ্ছে আমেরিকায় থাকা চীনা কোম্পানিগুলোকে পর্যবেক্ষণের আওতাতেই রাখবে যুক্তরাষ্ট্র। জিও-টেকনোলজিক্যাল বিশেষজ্ঞ পল টিওলো বিবিসিকে বলেছেন প্রথম দফার বাণিজ্য চুক্তি দু দেশের মধ্যকার উত্তেজনা প্রশমনে ভূমিকা রাখবে কিন্তু এটা দুদেশের প্রযুক্তিগত দ্বন্দ্ব ও অনাস্থা কতটুকু কমাবে তা প্রশ্ন সাপেক্ষ। নতুন চীন-মার্কিন চুক্তিতে যা থাকছে তীব্র বাক্যবাণে পরস্পরকে জর্জরিত করা, চরম উত্তেজনা কিংবা পিছু হটে 'যুদ্ধবিরতি'র নরম সুর - এসব কিছুই দেখা গেছে দুই বছরের আমেরিকা-চীন বাণিজ্য বিরোধে। +text: কয়েক হাজার মুরগীর আক্রমণে একটি শিয়াল মারা গিয়েছে। (ফাইল ফটো) দেশটির ব্রিটানিতে একটি মুরগীর খাঁচায় শিয়ালটি ঢুকে পড়লে দরজা তৎক্ষণাৎ বন্ধ হয়ে যায়। আর তারপরেই ঘটে এই অস্বাভাবিক ঘটনাটি। ঐ খাঁচায় ৩,০০০ মুরগী ছিল বলে জানা যাচ্ছে। "এটা এদের সহজাত প্রবৃত্তি। তারা ঠোঁট দিয়ে তাকে (শিয়ালটিকে)আক্রমণ করে", বলেছেন কৃষি বিষয়ক স্কুল গ্রস-চেনের ফার্মিং-এর প্রধান প্যাসকেল ড্যানিয়েল। পরের দিনে খামারের এক কোণে শিয়ালটির লাশ পাওয়া যায়। "এটার ঘাড়ে মুরগীর ঠোকরানোর চিহ্ন ছিল," সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন মি. ড্যানিয়েল। পাঁচ একর জমির উপর করা এই খামারে প্রায় ৬,০০০ মুরগীকে প্রাকৃতিক পরিবেশে পালন করা হয়। এএফপি জানাচ্ছে, দিনে��� বেলায় খাঁচার দরজা খুলে রাখা হয় যাতে মুরগীগুলো বাইরে ঘুরে-ফিরে বেড়াতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, সেসময়ই শিয়াল শাবকটি মুরগীর খাঁচায় ঢুকে পড়ে। এরপর যখন স্বয়ংক্রিয় খাঁচাটি বন্ধ হয়ে যায়, তখন পাঁচ-ছয় মাস বয়সের এই বাচ্চা শিয়ালটি ভেতরে আটকা পড়ে। "সম্ভবত এতোগুলো মুরগীর আক্রমণে শিয়ালটি ভয় পেয়ে গিয়েছিল", ফরাসী স্থানীয় সংবাদপত্র অয়েস্ট ফ্রান্সকে বলেন মি. ড্যানিয়েল। "তারা (মুরগীগুলো) দলবদ্ধ অবস্থায় খুবই নাছোড়বান্দা হয়ে উঠতে পারে", তিনি জানান। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: মুরগীর ডিমে তা দিচ্ছেন ফরাসী শিল্পী 'মুরগির দুনিয়া': কীভাবে পৃথিবীর দখল নিলো এই পাখি দেশি ও বিদেশী মুরগী চিনুন ফ্রান্সের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি স্কুলের খামারে কিছু মুরগী মিলে একটি ছোট শিয়ালকে মেরে ফেলেছে। +text: বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠানে যাবেন না ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় বিদায়ী প্রেসিডেন্ট লেখেন, "যারা জানতে চেয়েছে তাদের বলছি,আমি ২০শে জানুয়ারির অভিষেক অনুষ্ঠানে যাচ্ছি না।" এমন এক সময় একথা ঘোষণা করলেন মি. ট্রাম্প, যখন ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল ভবনে গত বুধবার ট্রাম্প-সমর্থকদের হামলায় উস্কানি দেবার জন্য ডেমোক্র্যাটরা ভাইস প্রেসিডেন্টের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন, সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী প্রয়োগ করে ট্রাম্পকে অপসারণ করার জন্য। মি. ট্রাম্পের টুইট অবশ্য ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এখন পর্যন্ত এরকম কিছু করার ইঙ্গিত দেননি। রাজধানী ওয়াশিংটনের এই ক্যাপিটল ভবনের সিঁড়িতেই নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণের ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানটি হয়ে থাকে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরোধীরা বলছেন, তারা তাকে অভিশংসনের প্রক্রিয়াও শুরু করতে পারেন, যদিও তা সম্পন্ন হবার সম্ভাবনা কম - কারণ মি. ট্রাম্পের মেয়াদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি আছে। বুধবারের হামলায় একজন পুলিশ কর্মকর্তা সহ পাঁচ জন নিহত হয়েছে। ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল ভবন মি. ট্রাম্প হবেন উত্তরসূরীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে না যাওয়া চতুর্থ মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সবশেষ এমন ঘটনা ঘটেছিল ১৮৬৯ সালে। সেবার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট এ্যান্ড্রু জনসন - পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ইউলিসিস গ্র্যান্টের সাথে একই ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যেতে অস্বীকার করেছিলেন। আরো পড়ুন: ক্যাপিটল হিলে হামলা: নিরাপত্তা ব্যর্থতা নিয়ে যেসব প্রশ্ন উঠেছে মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ট্রাম্পের এই ‘ইউ টার্ন‘ কেন ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি আগামী ২০শে জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় পরবর্তী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠানে যাবেন না। +text: দুই মাসের মধ্যে ঢাকায় পুলিশের ওপর দুইটি হামলার ঘটনা ঘটলো মতিঝিল থানার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার শিবলি নোমান বিবিসি বাংলাকে জানান, মালিবাগ মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের একটি গাড়ির কাছে রাত ৯টার দিকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ''তখন কাছে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাফিক বিভাগের একজন নারী এএসআই পায়ে এবং একজন রিকশাচালক মাথায় আঘাত পান। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।'' ''এই বিস্ফোরণের ঘটনাটি এখনো পুরোপুরি পরিষ্কার নয়। এটি কোন বোমা নাকি ককটেল বিস্ফোরণ, সেখানে কি ছুড়ে মারা হয়েছে নাকি আগে থেকে রাখা ছিল, কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, সেটা এখনো বোঝা যাচ্ছে না। বোমা বিশেষজ্ঞরা এখন ঘটনাস্থল পরীক্ষা করে দেখছেন, পুলিশের তদন্তও চলছে।'' পুলিশ জানিয়েছে, এ সময় পুলিশের ওই গাড়িতে আগুন ধরে যায়। পরে কাছের একটি পেট্রোল পাম্প থেকে অগ্নিনির্বাপণের সরঞ্জাম এনে আগুন নেভানো হয়। যেখানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, তার পাশেই রয়েছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও বিশেষ শাখার কার্যালয় (এসবি) প্রধান কার্যালয়। আরো পড়ুন: পুলিশের ওপর ককটেল হামলার দায় স্বীকার 'আইএসের' আইএস জঙ্গিরা কি বাংলাদেশে ফেরত আসছে? শ্রীলঙ্কায় হামলা: বাংলাদেশ কতটা শঙ্কামুক্ত? জঙ্গি মতাদর্শ ঠেকাতে বাংলাদেশ কতটুকু চেষ্টা করছে? যেখানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, তার পাশেই রয়েছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ ও বিশেষ শাখার কার্যালয় গত ২৯শে এপ্রিল ঢাকার গুলিস্তানে পুলিশের ওপর একটি ককটেল হামলা করা হয়, যাতে তিন পুলিশ আহত হন। সেই ঘটনার সঙ্গে এই বিস্ফোরণের মিল দেখতে পাচ্ছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। গুলিস্তানে সে বিস্ফোরণের ঘটনার দায় স্বীকার করেছিল মধ্যপ্রাচ্য-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট। ইসলামিক স্টেট গ্রুপের কর্মকাণ্ড নজরদারি করে, যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সাইট ইন্টেলিজেন্স জানিয়েছে, গুলিস্তানে ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস। হোলি আর্টিজান হামলার পর দুই বছরের মধ্যে তারা আবার ঢাকায় এই হামলা চালালো বলে সংস্থাটি জানিয়েছে। পাঁচ বছর পর আইএস প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদীর নতুন একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ওই হামলা হয় বলে সাইট ইন্টেলিজেন্স বলছে। সে হামলার পর ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সাংবাদিকদের বলেছিলেন, "সোমবার গুলিস্তানে ককটেলটি অনেক শক্তিশালী ছিল। আইএস যে দাবি করেছে, তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।" শ্রীলংকায় হামলার পরে বাংলাদেশের ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছেন, শ্রীলংকায় জঙ্গি হামলার পরে জঙ্গিবাদের ঝুঁকি কিছুটা বেড়েছে, তারা আরো বেশি উত্তেজিত হয়েছে। তবে তা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কিছু হওয়ার মতো অবস্থায় এটি এখনো যায়নি। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: নিষিদ্ধ পণ্য এখনও বাজারে, ক্রেতা-দোকানি অন্ধকারে 'কান্না করে, আর বলে বাংলাদেশে কোন বিচার নাই' ফেসবুকের কাছে কী তথ্য চায় বাংলাদেশ সরকার কী দাঁড়াতে পারে ভারতে মুসলিমদের পরিণতি? ঢাকার মালিবাগে পুলিশের একটি গাড়ির কাছে বিস্ফোরণের ঘটনায় একজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ দুইজন আহত হয়েছে। +text: শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় গত মাসে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চান বাংলাদেশের পেস বোলার শাহাদাত হোসেন। বিসিবির একজন মুখপাত্র রাবিদ ইমাম বিবিসিকে জানিয়েছেন মানবিক দিক বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড। শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে শাহাদাত হোসেন ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মিরপুর মডেল থানায় মামলা হয়। ওই মামলায় বর্তমানে জামিনে রয়েছেন শাহাদাত হোসেন। সেপ্টেম্বরের ৬ তারিখ বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের পেস বোলার শাহাদাত হোসেন ও তার স্ত্রী জেসমিন জাহান নিত্যর বিরুদ্ধে গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। ঐ দিন সন্ধ্যায় ঢাকার মিরপুর থেকে ১৩ বছর বয়সী গৃহকর্মী মাহফুজা আক্তার হ্যাপিকে স্থানীয় মানুষজনের সহায়তায় উদ্ধার করেন খন্দকার মোজাম্মেল হোসেন নামে একজন সাংবাদিক। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় তার শরীরে প্রচুর পুরনো ও নতুন নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। গৃহকর্মীর একটি পা ভাঙা ছিল। বছর খানেক আগে গৃহকর্মী হিসেবে যোগ দেয়ার পর থেকেই তাকে শাহাদাত হোসেন ও তার স্ত্রী জেসমিন জাহান নিত্য দুজনেই নিয়মিত মারধোর করতো বলে অভিযোগ রয়েছে। গত মাসে এক সংবাদ সম্মেলনে শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় দে���বাসীর কাছে ক্ষমা চান বাংলাদেশের পেস বোলার শাহাদাত হোসেন । তারপর আজ বিসিবি ঘরোয়া ক্রিকেটে শাহাদাত হোসেনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ঘোষণা দিলো। বাংলাদেশের ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেনের ওপর থেকে ঘরোয়া ক্রিকেটের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বা বিসিবি। +text: বিনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার মন্ত্রিসভা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই 'গোলান হাইটস' বা গোলান মালভূমি এলাকা সবসময় ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণেই থাকবে। ইসরায়েলী সংবাদ মাধ্যমে খবর বেরিয়েছে, সিরিয়ায় শান্তি ফিরিয়ে আনার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় সিরিয়ার সরকার এই এলাকা ফিরে পাওয়ার দাবি জানাতে পারে। এর পর আজ এই প্রথমবারের মতো গোলান হাইটসে ইসরায়েলী মন্ত্রীসভার এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গোলান হাইটস কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা বিশ্লেষকরা বলছেন, এর মাধ্যমে গোলান যে ইসরায়েলের অংশ - এ বার্তাই দেয়া হচ্ছে। বৈঠক শেষে মি. নেতানিয়াহু স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছেন যে তার দেশ এই এলাকা কখনোই ছাড়বে না। ১৯৬৭ সালে আরবদের সাথে ছয় দিনের যুদ্ধে সিরিয়ার গোলান মালভূমি দখল করে নেয় ইসরায়েল। পরে ১৯৮১তে এসে এলাকাটি নিজের অংশ বলে ঘোষণা দেয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহল কখনই ইসরায়েলের এই দাবির স্বীকৃতি দেয়নি। গোলান হাইটস সিরিয়াও সেই ১৯৬৭ থেকেই সামরিক কৌশলের দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকাটি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করে আসছে। কিন্তু ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পরিস্কার করে বললেন ফেরত দেওয়ার প্রশ্নই আসেনা, গোলান আজীবনের জন্য ইসরায়েলের অংশ থাকবে। সিরিয়া আর ইসরায়েলের মাঝখানে গোলান মালভূমি: মানচিত্র তার এই সংকল্প প্রমাণ করতে তিনি এই প্রথমবারের মত অধিকৃত এই অঞ্চলে তিনি তার মন্ত্রীসভার বৈঠক করেছেন আজ। মন্ত্রীসভার ঐ বৈঠকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, গোলান মালভূমিতে মন্ত্রীসভার এই বৈঠক তিনি করেছেন এই পরিস্কার বার্তা দিতে। আর তা হল - গোলান চিরদিনের জন্য ইসরায়েলের অংশ হয়ে থাকবে। ইসরায়েল কখনই গোলান ছেড়ে যাবেনা। কিন্তু কেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী এভাবে স্পষ্ট করে এখন একথা বললেন? গোলান হাইটস পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ পরবর্তী যে বোঝাপড়ার কথা এখন উঠছে, তাতে গোলান মালভূমির ভবিষ্যতও ���ার অংশ হবে। সে কারণেই এখন হয়ত ইসরায়ের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জানিয়ে দিতে চাইছে, গোলান তাদের। ১৯৬৭ সালে দখলের পর থেকেই গোলান মালভূমিতে ইসরায়েলে বড় ধরণের সামরিক উপস্তিতি বজায় রেখেছে। এছাড়া সেখানে ৩০টি ইহুদি বসতি স্থাপন করা হয়েছে যেখানে ২০,০০০ মানুষ বসবাস করছে। উনিশশ' সাতষট্টি সালের যুদ্ধে ইসরায়েল যে গোলান মালভূমি এলাকা দখল করে নিয়েছিল - তা আর ফেরত দেয়া হবে না, বলছেন ইসরায়েলী প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। +text: মধ্যপ্রাচ্যে নির্মাণ খাতে কাজ করেন এশিয়ার বিভিন্ন দেশের শ্রমিকরা আবার অনেকে কাজ না পেয়ে বিদেশেই মানবেতর জীবন যাপন করছে, যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বিবিসি বাংলাকে বলছেন ইতোমধ্যেই প্রায় চার হাজার ব্যক্তিকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে এবং আরও প্রবাসীকে ফিরিয়ে আনার জন্য একটি তালিকা দিয়েছে সৌদি আরব। তিনি বলছেন সৌদি আরবসহ তেল নির্ভর অর্থনীতির দেশগুলোতে কর্মসংস্থান পরিস্থিতি আগের মতো ভবিষ্যতে আর নাও থাকতে পারে। তাই শ্রমিকদের বিকল্প শ্রমবাজারে পাঠানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করেছেন তারা। "যেসব দেশে শ্রমিক আছে আমরা তাদের বলেছি যে এসব লোকেরা যেন চাকুরি না হারায় কিংবা খাদ্য ও চিকিৎসার সংকটে যেন না পড়ে। আর প্রবাসীদের বলেছি তারা যেন যেখানে আছেন সেখানেই থাকেন। তবে এটা সত্য যে মধ্যপ্রাচ্যে তেলের দাম পড়ে গেছে। ''অনেক দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কমে যাবে। তখন যাতে শ্রমিকরা অন্য দেশে যেতে পারেন সেজন্য অন্যান্য দেশে এভিনিউ খুঁজছি যে কোথায় তাদের পাঠানো যেতে পারে," বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন যারা ইতোমধ্যেই এসেছেন ও সামনে আসবেন তাদের জন্যও সরকারের দিক থেকে নেয়া হয়েছে বিশেষ পরিকল্পনা। "যাতে তারা কর্মক্ষম থাকতে পারেন সেজন্য লোন দেয়া হবে। স্কিল ট্রেনিং দিবো যাতে নিজেরা কাজ পান বা উদ্যোক্তা হতে পারেন। তবে আপদ সবসময় থাকবে না। তখন অবস্থার পরিবর্তন হবে ও হয়তো তারা কাজ পাবেন"। প্রায় আড়াই মাস আগে সৌদি আরব থেকে এসে আর সেখানে ফিরে যেতে পারেনি আবির মোড়ল। মি. মোড়ল বলছেন তার ছুটির শেষ পর্যায়ে এসে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর কাজে ফেরা হয়নি তার। মি. মোড়লের মতো অন্তত দু লাখ প্রবাসী শ্রমিক দেশে ফির��� ফিরে এসেছেন গত ১৮ই ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ই মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে। করোনাভাইরাস নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় বিশ্বজুড়ে লকডাউন এবং অচলাবস্থার কারণে বহুমাত্রিক সংকট দেখা দিয়েছে বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানি খাতে দুনিয়া জুড়ে নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে একুশে মার্চ থেকে সৌদি আরবসহ দশটি দেশের সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ সরকার। এর আগে এক মাসে দেশে ফিরেছেন চার লাখ চল্লিশ হাজার মানুষ। অভিবাসন নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের হিসেবে এর অর্ধেকই ছিলেন প্রবাসী শ্রমিক, যারা পরবর্তীতে আর যেতে পারেননি বা সময়মত ফিরতে ব্যর্থ হওয়ায় কাজ হারিয়েছেন। কিন্তু যারা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে থেকে গেছেন তাদের অনেকেই লকডাউন শুরুর পর কাজ হারিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে। বিশেষ করে যারা ফ্রি ভিসায় গিয়েছিলেন তাদের অবস্থা অত্যন্ত করুণ, বলছেন সৌদি আরবে একটি কোম্পানিতে কাজ করা নুর ইসলাম শেখ। তিনি বলছেন অনেকেই কাজ হারিয়েছেন এবং তার আশংকা সামনে এ অবস্থা চলতে থাকলে তাদের জন্য আরও কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। বিশ্বের ১৬৯টি দেশে যে এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশি কাজ করে, তাদের পঁচাত্তর ভাগই মধ্যপ্রাচ্যের এবং তারাই মূলত রেমিটেন্সের বড় অংশের যোগান দেন। এবার করোনাভাইরাস মহামারির শুরুতেই ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করেছে সৌদি আরব সহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো, যারা জের ধরে নিয়মিত ফ্লাইট বন্ধ হওয়ার পরেও ফেরত আনতে হয়েছে প্রায় চার হাজার শ্রমিক। এছাড়া চলতি মাস নাগাদ আরও ২৯ হাজার শ্রমিককে নিয়ে আসার কথা রয়েছে। কিন্তু এ অবস্থা যদি চলতেই থাকে তাহলে পাল্টে যেতে পারে বাংলাদেশের শ্রমবাজারের সার্বিক পরিস্থিতিই। শুধু সৌদি আরবই নয়, ওমান, কাতারসহ আরও কয়েকটি দেশ থেকে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ফেরত আসার তালিকা বেশ লম্বা। এমনকি মালয়েশিয়াতেও সংকুচিত হচ্ছে বাংলাদেশি শ্রমিকদের জায়গা। পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন মহামারির জের ধরে আসা দুর্যোগময় পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রবাসীদের জন্য ইতোমধ্যেই দুশো কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়েছে। প্রবাসীদের জন্য দূতাবাসগুলোর জন্য অতিরিক্ত অর্থ দেয়া হয়েছে। আবার যারা দেশে ফিরেছেন বা ফিরে আসবেন তারা যেন সহজ শর্তে ঋণ নিয়ে কাজ করতে পারেন সেই ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? বিশ্ব মহামারি শেষ হতে কতদিন লাগবে? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় করোনাভাইরাস নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন করোনাভাইরাস মহামারির জের ধরে ব্যাপক কড়াকড়ির কারণে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে ইতোমধ্যেই বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি শ্রমিক দেশে ফিরে এসেছে । +text: জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বলছে, ঢাকার ৯৩ শতাংশ ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রি করা হয়। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বলছে, গত ছয় মাসে সংস্থার নিয়মিত বাজার অভিযানে যেসব ফার্মেসি বা ঔষধ বিক্রির দোকান পরিদর্শন করা হয়েছে তাতে ৯৩ শতাংশ ফার্মেসিতেই তারা মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ পেয়েছেন। অধিদফতরের উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বিবিসি বাংলাকে বলেন, তিনি নিজেসহ কয়েকজন কর্মকর্তা মনিটরিং টিমগুলোর নেতৃত্ব দিয়েছেন। "প্রতিদিন আমাদের তিনটি টিম বাজার পরিদর্শনে গিয়েছি। গত ছয় মাসের চিত্র এটি যে যেসব এলাকায় আমরা কাজ করেছি বিশেষ করে ফার্মেসিগুলোকে সেখানে প্রায় প্রতিটিতেই কিছু না কিছু মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ আমরা পেয়েছি। আর এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।" মিস্টার শাহরিয়ার বলেন, বিষয়টি নিয়ে তারা এখন ঔষধ ব্যবসায়ী অর্থাৎ ফার্মেসি মালিকদের সাথে কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছেন। "আসলে বিষয়টি বোঝানো গেলে এ সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। অনেক জায়গাতেই মালিকরা সহায়তা করছেন। থানা ও জেলা পর্যায়েও কর্মকর্তাদের ব্যবসায়ী বা মালিকদের সাথে সরাসরি কাজ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।" ডাক্তারদের লেখা প্রেসক্রিপশন পড়া যায় না কেন? অতিমাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক খেলে কী ক্ষতি হয় সাবরিনা সুলতানা চৌধুরীর ক্যান্সার যুদ্ধের গল্প ওজন কমানোর ঔষধ দিয়ে মশার কামড় নিয়ন্ত্রণ? মেয়াদোত্তীর্ণ ঔ��ধ: কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে ভোক্তা অধিকার? ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের হিসেবে, দেশে ফার্মেসির সংখ্যা এক লাখ ২৪ হাজারের মতো। তবে এসব লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানের বাইরেও ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত হয় কয়েক হাজার ফার্মেসি। সাধারণত ফার্মেসীকে লাইসেন্স দেয়া বা কোনো অনিয়ম পেলে লাইসেন্স বাতিলের ক্ষমতা আছে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের। মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলছেন, অভিযানের সময় মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ পাওয়া গেলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কারাদণ্ড দেয়া ছাড়া আর সব পদক্ষেপই নিতে পারেন। "সব ধরণের জরিমানা ছাড়াও প্রয়োজনে লাইসেন্স বাতিলের জন্য আমরা (ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ (ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর)কে বলতে পারি আইন অনুযায়ী। সাম্প্রতিক সময়ে একটি ফার্মেসী আমরা তাৎক্ষনিক বন্ধও করে দিয়েছি।" ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ই মার্চ তারা শাহজাহানপুর ও ধানমন্ডিতে দুটি ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ পেয়ে জরিমানা করেছেন ৫০ হাজার টাকা করে। বনানীতে একটি ফার্মেসিকেও জরিমানা করা হয়েছে গত ১১ই মার্চ। আবার ১২ই মার্চ ক্ষিলক্ষেতের একটি ফার্মেসি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এর বাইরেও শ্যামলী,মুগদাসহ আরও কয়েকটি এলাকায় নিয়মিত অভিযানে বেশ কিছু ফার্মেসিকে জরিমানা করা হয়েছে। মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলছেন, "এমনও হয়েছে যে একটি ফার্মেসিতে ঢুকেই ঔষধ রাখার বাক্সে হাত দিয়েই পেয়েছি মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ।" "কিন্তু তাদের সেটি নিয়ে কোনো বোধোদয়ই নেই। আমরা এখন তাদের বোঝানোরও চেষ্টা করছি যে এটি ভয়াবহ অন্যায় ও অসৎ চর্চা।" সাধারণত ফার্মেসীকে ব্যবসার লাইসেন্স দেয়া বা কোনো অনিয়ম পেলে লাইসেন্স বাতিলের ক্ষমতা আছে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের। ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর যা বলছে সাধারণত ফার্মেসিকে ব্যবসার লাইসেন্স দেয়া বা কোনো অনিয়ম পেলে লাইসেন্স বাতিলের ক্ষমতা আছে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের। অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মুস্তাফিজুর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলছেন, যে ফার্মেসিতে বড় সমস্যা হলো ফার্মাসিস্ট রাখা হয়না। "তবে পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। ব্যবসায়ীরাও আমাদের সহায়তা করছেন।" তিনি বলেন, "ভোক্তা অধিকার থেকে যে তথ্য এসেছে সেটি বাস্তবতা বিবর্জিত। কিছু দোকানে এমন অনিয়ম হতে পারে সেটি ২/৩ শতাংশের বেশি হবেনা।" "নিয়মিত বাজার তদারকি করা হচ্ছে। স্টোর ম্যানেজমেন্ট বিশেষ করে কোনো ধরণের ঔষধ কিভাবে রাখতে হবে।" তিনি জানান: "আবার কোনো ঔষধের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে কোম্পানি সেগুলো বদলে নতুন ঔষধ দেবে-এটিও নিশ্চিত করা হয়েছে"। মি. রহমান বলেন, বাজারে এখন ৪০/৪৫ হাজার ঔষধের আইটেম আছে এবং বাজারে গিয়ে দশটি ঔষধ চাইলে সেখানে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ পাওয়া কঠিনই হবে। "তবে রেগুলার ফার্মাসিস্ট রাখা, মেডিসিন শপের কার্যক্রম নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত আলোচনা করছি। কাউন্সেলিং করানো হচ্ছে।" তিনি দাবি করেন, "এসব কিছু নিয়ে এখন ফার্মেসিগুলোতে আমরা নিয়মিত অনেক সময় দিচ্ছি। ফলে পরিস্থিতির অনেক উন্নত হয়েছে।" স্যাম্পল ঔষধ আর আন-রেজিস্টার্ড ঔষধ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলছেন, বাজারে নতুন উদ্বেগ হিসেবে দেখা দিয়েছে স্যাম্পল হিসেবে দেয়া ঔষধগুলো দোকানে চলে আসা। "বিভিন্ন কোম্পানি তাদের উৎপাদিত ঔষধ চিকিৎসকদের দিয়ে থাকেন। এগুলোতে অনেক সময় মেয়াদ উল্লেখই থাকেনা।" "কিভাবে যেনো এসব ঔষধ ফার্মেসিতে চলে আসছে। যেগুলো বিক্রেতারা গছিয়ে দিচ্ছেন ক্রেতাকে।" ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মুস্তাফিজুর রহমান বলছেন, এটি অনৈতিক যদি কেউ ইচ্ছে করে স্যাম্পল ঔষধ রাখেন ও বিক্রি করেন। তিনি বলেন, বাজারে ঔষধের ক্ষেত্রে আরেকটি সমস্যা হলো আন-রেজিস্টার্ড ঔষধ। "সাধারণত চোরাইপথে বা লাগেজে করে অনেক ঔষধ এনে বাজারে বিক্রি করেন কম দামে। এগুলোতে মেয়াদ সম্পর্কিত তথ্যই থাকেনা। কারণ এগুলো বৈধ পথে আসেনা। এগুলো কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। তবে ব্যবসায়ীরা ক্রমশ এসব বিষয়ে সচেতন হচ্ছেন। আর আমরা কাউন্সেলিং করাচ্ছি প্রতিনিয়ত"। মডেল ফার্মেসি ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মি. রহমান বলছেন, নির্ভেজাল ঔষধ বিক্রি নিশ্চিত করতে তারা মডেল ফার্মেসি করছেন বিভিন্ন এলাকায়। ঢাকাসহ সারাদেশে পর্যায়ক্রমে দু'হাজারের বেশি মডেল ফার্মেসি হবে এবং প্রয়োজনে এ সংখ্যা আরো বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি। তিনি বলছেন ফার্মাসিস্ট রাখা, ক্রেতাদের ঔষধ ভালো করে বুঝিয়ে দেয়া, যথাযথভাবে ঔষধ সংরক্ষণসহ ক্রেতা স্বার্থ সংরক্ষণের জন্যই মডেল ফার্মেসি হচ্ছে। যেগুলোতে ব্যবসায়ীরা নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারবেন। কর্মকর্তারা জানিয়ে��েন দুটি ক্যাটাগরির মডেল ফার্মেসি হচ্ছে যার একটি হচ্ছে ঢাকা বা বড় শহরগুলোতে আর অন্য ক্যাটাগরির ফার্মেসি হবে থানা ও জেলা পর্যায়ে। বাংলাদেশের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বলছে, ঢাকার ৯৩ শতাংশ ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রি করা হয়। তবে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর বলছে এটি 'বাস্তবতা বিবর্জিত' তথ্য। +text: দক্ষিণ গাযা উপত্যাকা রাফা এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলা চালায় সোমবার রাতে ফিলিস্তিনিরা জেরুসালেমের উদ্দেশ্যে রকেট ছুড়লে সহিংসতা বাড়তে থাকে। এর জবাবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাযা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি জঙ্গিদের উদ্দেশ্যে বিমান হামলা করে। গাযায় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, এই বিমান হামলায় ২০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে শিশু রয়েছে। ইসরায়েলি সেনারা বলছে, হামাস গোষ্ঠীর অন্তত তিনজন সদস্য এ সময় নিহত হয়েছে। সোমবার জেরুসালেমে সংঘর্ষে কয়েকশো' ফিলিস্তিনি আহত হওয়ার পর হামাস পাল্টা হামলার হুমকি দিয়েছিল। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাস "রেড লাইন অতিক্রম করে ফেলেছে" এবং ইসরায়েল এর জবাব দিয়েছে "শক্ত ভাবে"। গত কয়েক দিনে জেরুসালেমে যে সহিংসতা হচ্ছে, সেটা গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক। ইসরায়েলি পুলিশ এবং ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের মধ্যকার চলমান সংঘর্ষ আরও বড় ধরণের সহিংসতা উসকে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইসলাম ধর্মের তৃতীয় পবিত্র স্থান আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণ এবং ইহুদিদের পবিত্র স্থান টেম্পল মাউন্টে ফিলিস্তিনিদের যেতে যে বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে, তাতে ক্ষুব্ধ হয়েছে ফিলিস্তিনিরা। ফিলিস্তিনি এক যুবক পাথর ছোড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে মঙ্গলবার ভোরে ফিলিস্তিনে রেড ক্রিসেন্ট বলেছে যে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে জেরুসালেম এবং পশ্চিম তীরে সংঘর্ষে সাতশো' জনের বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে। বিশ্ব নেতাদের প্রতিক্রিয়া মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেছেন, হামাসকে অবশ্যই অতি দ্রুত রকেট হামলা বন্ধ করতে হবে । তিনি আরও বলেন, "দুই পক্ষকেই শান্ত থাকতে হবে"। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি একই রকম ভাবে বলেছেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সংঘর্ষের ব্যাপারে গুরুতরভাবে উদ্বিগ্ন। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব টুইট করে বলছেন ���ে রকেট হামলা "অবশ্যই বন্ধ করতে হবে"। বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করা বন্ধ করার আহ্বান জানান তিনি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, পশ্চিম তীর, গাযা এবং পূর্ব জেরুসালেমে গুরুতর সংঘর্ষ হচ্ছে, যা তাৎক্ষনিকভাবে বন্ধ করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, গাযা থেকে ইসরায়েলের বেসামরিক লোকের উপর যে ভাবে হামলা করা হয়েছে, তা একেবারেই গ্রহণযোগ্য না। সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এই বিষয়ে একটি জরুরি বৈঠক হলেও কোন বিবৃতি দেয়া হয়নি। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে কিন্তু একজন কূটনৈতিক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থাকে বলেছেন যে জাতিসংঘ, মিশর এবং কাতার - যারা ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে মধ্যস্থতা করেন - তারা সবাই চেষ্টা করছেন এই লড়াই থামাতে। সহিংসতা উসকে দিল যে বিষয়গুলো শনিবারে সহিংসতার শুরু হয় জেরুসালেমের দামেস্ক গেটে যখন ইসলাম ধর্মের পবিত্র রাত লাইলাতুল আল-কদর উপলক্ষে হাজার হাজার মুসলমান আল-আকসা মসজিদে নামাজ আদায় করেন। আরও পড়ুন: আরবদের হটিয়ে যেভাবে ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল জেরুজালেমে কেন প্রার্থনার স্থান নিয়ে দ্বন্দ্ব? জেরুজালেম রাজধানীর স্বীকৃতি পেলে বিপদ কোথায়? আরব-ইসরায়েল সংঘাত শুরু যে ৬৭ শব্দের অনুচ্ছেদে এর আগে শনিবার মসজিদ অভিমুখে নামাজীদের নিয়ে যাওয়া অনেক বাস আটকে দেয় ইসরায়েলি পুলিশ। শুক্রবারের সহিংসতার কারণে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তারও করা হয়। ''তারা আমাদের নামাজ পড়তে দিতে চায় না। সেখানে প্রতিদিনই লড়াই করতে হচ্ছে, প্রতিদিনই সহিংসতা হচ্ছে। প্রতিদিনই সেখানে সমস্যার তৈরি হচ্ছে,'' রয়টার্স নিউজ এজেন্সিকে বলেছেন সাতাশ বছরের মাহমুদ আল-মারবুয়া। সহিংসতার পেছনের কারণ ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের পর থেকেই পূর্ব জেরুসালেম দখল করে রেখেছে ইসরায়েল। পুরো শহরকে তারা নিজেদের রাজধানী বলে মনে করলেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ দেশ তাতে স্বীকৃতি দেয়নি। ফিলিস্তিনিরা দাবি করে, পূর্ব জেরুসালেম হবে তাদের স্বাধীন দেশের রাজধানী। ওই এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তেজনা চলছে, কারণ ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের জন্য পূর্ব জেরুসালেমের বাড়িঘর থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করার সম্ভাবনায় প্রতিদিনই কলহ তৈরি হচ্ছে। জাতিসংঘ ইসরায়েলে��� প্রতি আহবান জানিয়েছে যেন যেকোনো ধরনের উচ্ছেদের কর্মকাণ্ড বন্ধ করা হয় এবং ''বিক্ষোভকারীদের প্রতি যেন সর্বোচ্চ সহনশীলতা দেখানো হয়''। জোর করে বাস্তুচ্যুত করার যেকোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহবান জানিয়েছে আরব লীগ। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: কুম্ভমেলার তীর্থযাত্রীরা যেভাবে পুরো ভারতে কোভিড ছড়িয়ে দিল খালেদা জিয়ার চিকিৎসা: হাল ছাড়ছে না পরিবার কোয়াডে যোগ দিলে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক 'খারাপ হবে'‍: চীনা দূত ভালদিমির: ‘রুশ গুপ্তচর‘ তিমির জন্য খোঁজা হচ্ছে নিরাপদ আশ্রয় বাঁশের ব্যাট হতে যাচ্ছে 'ক্রিকেটারদের স্বপ্ন' মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্য যত দ্রুত সম্ভব উত্তেজনা কমাতে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। +text: নাইটক্লাবের সামনে অ্যাম্বুলেন্স হামলাকারীকেও ধরতে পারেনি পুলিশ। ইংরেজি নববর্ষের প্রথম প্রহরে চালানো এই হামলায় অন্তত ৩৯ জন নিহত হয়। গত বছর জুড়ে তুরস্কে ইসলামিক স্টেট এবং কুর্দি জঙ্গিদের চালানো অন্তত ছয়টি বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে - যাতে হতাহত হয়েছে দুশতাধিক লোক। হামলার শিকার ব্যক্তিদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। ফলে দেশটির জন্য ২০১৬ ছিল এক ভয়াবহ বছর এবং শেষ দিনে আরো একটি আক্রমণ দেখিয়ে দিল, নিরাপত্তা জোরদার করা স্বত্বেও দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি কতটা নাজুক অবস্থায় আছে। তুরস্ক কেন বারবার এধরনের হামলার লক্ষ্য হয়ে উঠছে? আস্কারায় একজন সাংবাদিক সরওয়ার আলম বলছিলেন তুরস্কের পাশের দুটি দেশ ইরাক ও সিরিয়াতে কয়েক বছর ধরে যুদ্ধ চলছে এবং সেখানে যে সন্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে গত দেড় / দুই বছর তুরস্কের অবস্থান ছিল প্রত্যক্ষ। এর কারণেই আইএস তুরস্ককে টার্গেট করছে। হামলাকারীকে খুঁজছে তুর্কী পুলিশ তিনি বলছিলেন "কিছুদিন আগে আইএস যে ভিডিও গুলো প্রকাশ করেছে সেখানে স্পষ্টভাবেই তারা হুমকি দিয়েছে যে পরবর্তী টার্গেট হবে তুরস্ক এবং তুরস্কের যে মুল স্থাপনাগুলো আছে সেগুলোকে তারা টার্গেট করবে"। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের জন্য কতটা চ্যালেঞ্জ? তুরস্কের সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবেই তুরস্ক এটা দেখছে। তুরস্কের সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে একটা সন্ত্রাসী গ্রুপের বিরুদ্ধে আমরা কাজ করছি ব্যাপারট��� তেমন না বা একটা গোষ্ঠী যে আমাদের বিরুদ্ধে কাজ করছে তেমনটিও না। সরকারের কথা হলো তারা একসাথে অনেকগুলো সন্ত্রাসী গ্রুপের মোকাবেলা করছে। দেশের ভেতরের রাজনৈতিক অস্থীতিশীল অবস্থা কি দায়ী? এরদোয়ান সরকারের সাথে ন্যাশনালিষ্ট মুভমেন্ট পার্টি সরাসরি একাত্মতা ঘোষণা করেছে। এর আগে ইস্তাম্বুল স্টেডিয়ামের পাশে যে হামলাটা হলো তারপর পার্লামেন্টের চারটা দলের মধ্যে তিনটা দল সন্ত্রাস মোকাবেলা করার জন্য একত্রে বিবৃতি দিয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে রাজনীতির মাঠে মতভেদ থাকলেও সন্ত্রাসী মোকাবেলায় তারা এরদোয়ান সরকারকে সমর্থন করার কথায় বলছে। তবে এখানে একটা বড় বিষয় হলো তিনটি দল সন্ত্রাসবাদ বিরোধী বিবৃতি দিলেও কুর্দিদের দল এই বিবৃতির বাইরে রয়েছে। তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে নাইটক্লাবের ওপর হামলার দায়িত্ব এখনও কোন গোষ্ঠী স্বীকার করেনি। +text: শেখ হাসিনাকে মাদ্রাসা ভিত্তিক সংগঠনগুলোর তরফ থেকে এই সংবর্ধনা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা বিতর্ক চলছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মাদ্রাসা ভিত্তিক সংগঠনগুলোর তরফ থেকে এই সংবর্ধনা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা বিতর্ক চলছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ২০১৩ সালে বাংলাদেশে যখন ব্লগার এবং অনলাইন এক্টিভিস্টরা ঢাকার শাহবাগে আন্দোলনে নেমেছিলেন, তখন আহমদ শফীর নেতৃত্বে তাদের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমেছিল কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। সরকারের বিরুদ্ধে ঢাকা অবরোধের ডাক দিয়ে শাপলা চত্বর অবস্থান নিয়েছিলো তারা - যাতে সমর্থন জানিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। শেখ হাসিনার সরকার তখন কঠোরভাবে হেফাজতে ইসলামকে দমন করেছিল। কিন্তু পাঁচ বছর পর রোববার ঢাকায় আহমদ শফীর সঙ্গে এক মঞ্চে বসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সংবর্ধনা গ্রহণকে সেদিনের আন্দোলনকারী ব্লগাররা কিভাবে দেখছেন? এ নিয়ে ব্লগার আইরিন সুলতানা বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "রাজনৈতিকভাবে এটা হয়তো একটা কৌশল হতে পারে, কিন্তু এটা অনেকভাবেই আমাদের আশাহত করে। কারণ ব্লগাররা অতীতে নানা রকম উস্কানির শিকার হয়েছেন, অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন।" এটি কি নির্বাচনের আগে কট্টরপন্থী ধর্মীয় দলগুলোর কাছ থেকে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের একটি চেষ্টা? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ড��ন এবং রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক সাদেকা হালিম বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, এটা একটা জটিল প্রশ্ন। এ মৈত্রীর সুদূরপ্রসারী পরিণতি কি হবে তা আমরা জানিনা - বলছেন একজন বিশ্লেষক আরো পড়ুন: হেফাজত ও আওয়ামী লীগ সখ্যতা: শুধু ভোটের জন্য? 'শোকরানা মাহফিলের রাজনৈতিক বার্তা নেই' বাংলাদেশে কওমী মাদ্রাসায় পড়ছে কারা? মাদ্রাসার পাঠ্যবইয়ে কেন পরিবর্তন আনা হচ্ছে "২০১৩-র ৫ই মে হেফাজতের যে তান্ডব আমরা দেখেছি, নারীদের নিয়ে তারা অনেক অবমাননাকর কথা বলেছেন, নারীদের লেখাপড়া, সম্পত্তির অধিকার বন্ধ করে দিতে বলেছেন - তার সাথে আওয়ামী লীগের সম্পৃক্ততা সাময়িক লাভ এনে দিলেও, এর সুদূর প্রসারী পরিণতি কি হবে তা আমরা জানিনা" - বলছিলেন তিনি। "আওয়ামী লীগ একটি পুরোনো দল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা অনেক গভীর। তিনি নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী। এসব ক্ষেত্রে তিনি তার প্রজ্ঞা দিয়ে এর পরিণতি কি হতে পারে তা ভাববেন।" হেফাজতের সাথে এই মৈত্রীর পরে আওয়ামী লীগ কি আর তাদের সমর্থন পাবে - যারা সাধারণত একটি ধর্মনিরপেক্ষ দলকেই সমর্থন করতে চান? জবাবে ব্লগার আইরিন সুলতানা বলছিলেন, "সেই চ্যালেঞ্জটা আসলে আওয়ামী লীগকেই নিতে হবে, এই অনিশ্চয়তার জায়গাটাও তাকে অনুভব করতে হবে। ২০০৯ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করে ঢল নেমেছিল, সেই বিশ্বাস তারা রেখেছে কিন্তু অনেক আশাহত হবার মতো ব্যাপারও ঘটেছে, অনেকগুলো ধাক্কাও গেছে। আমি চাইবো আওয়ামী লীগ ব্যাপারটা অনুভব করুক, বুঝুক সে এটা এত সহজ ব্যাপার না।" সাদেকা হালিম বলেন, "বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গণতান্ত্রিক বা ধর্মনিরপেক্ষতার রেটিংএ এখনো আওয়ামী লীগই এগিয়ে আছে। যারা অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল বা ধর্মনিরপেক্ষ - তাদের বেছে নেবার মত দল খুব সীমিত, তাদের কাছে আওয়ামী লীগই এখনো শেষ ভরসা।" সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হাজার হাজার মাদ্রাসা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সমাবেশ হয় আইরিন সুলতানা বলেন, "কিছু কৌশল করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করাটাই সফলতা নয়। সচেতনভাবে কেউ বারবার আওয়ামী লীগকে বেছে না-ও নিতে পারে। আমি মনে করি, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের সে চ্যালেঞ্জটার মুখোমুখি হওয়া উচিৎ। সাদেকা হালিমের কথায়, হেফাজত ও আওয়ামী লীগের সম্পৃক্ততা তাদের সাময়িক ফল এনে দিতে পারে, কিন্তু ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগের কারণ আছে��� "আমরা মনে করি আজকের এই হেফাজত-আওয়ামী রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা - এর পরিণতিতে ভবিষ্যতে তারা যদি আরো বেশি কিছু দাবি করে বসেন এবং তা যদি নারীদের অধিকারের বিপক্ষে যায় - সেখানে নারীরা অবশ্যই সোচ্চার হবেন।" প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই এগুলো মনে রেখেছেন, বলেন সাদেকা হালিম। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আজ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক বড় সমাবেশে সংবর্ধনা দিয়েছেন কওমী মাদ্রাসাগুলোর হাজার হাজার শিক্ষক এবং ছাত্র। তার সঙ্গে একই মঞ্চে এই অনুষ্ঠানে ছিলেন হেফাজতে ইসলামের আমির আহমদ শফি। +text: পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপন নিয়ে বিতর্ক রয়েছে ওই প্রস্তাবটিতে পার্লামেন্টের ৬০ সদস্যের মধ্যে ৫২ জন 'হ্যাঁ' ভোট দেন। নতুন এই প্রস্তাবে পশ্চিমতীরে বসতি নির্মাণের জন্য অধিকৃত ফিলিস্তিনি জমির মালিকদের অর্থ কিংবা বিকল্প জমি দিয়ে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীরে বসতি স্থাপনের বিষয়টিতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থান তাঁর পূর্বসূরি বারাক ওবামার তুলনায় অনেকটাই নরম। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ফিলিস্তিনে বসতি স্থাপনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক নিন্দা ও চাপকেও উপেক্ষা করছে ইসরায়েল। ট্রাম্প প্রশাসনের হাতে ক্ষমতা যাওয়ার পর গত কয়েক সপ্তাহে বেশ কয়েকটি এলাকায় বসতি স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে ইসরায়েল। অন্যদিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে এই আইন পাশের মাধ্যমে তারা তাদের জমি চুরিকে বৈধ করলো এবং এটা কোন রাজনৈতিক ফয়সালার পথকে রুদ্ধ করে দেবে। আরও পড়ুন: ক্যাথলিক চার্চে যৌন নিপীড়নের শিকার হাজারো শিশু কুমিরের বাচ্চা ‘উধাও হবার’ রহস্যের সমাধান সিইসি হচ্ছেন সাবেক সচিব নুরুল হুদা সুপ্রিম কোর্ট চত্বরের ভাস্কর্য অপসারণ চায় হেফাজত ইসরায়েলের পার্লামেন্ট এমন এক বিতর্কিত আইন পাশ করেছে, যার ফলে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ব্যক্তি মালিকানার জমিতে তৈরি চার হাজার ইহুদী বসতিস্থাপনকারীর বাড়িঘর তৈরিকে বৈধতা দেবে। +text: আইফোন ১২ আইফোন ১২ সিরিজের মডেলগুলো হলো- আইফোন ১২, আইফোন ১২ মিনি, আইফোন ১২ প্রো এবং আইফোন ১২ প্রো ম্যাক্স । প্রতিষ্ঠানটি নিশ্চিত করেছে যে এই ফোনসেটের একটি নতুন 'মিনি' মডেল থাকবে, যেটির স্ক্রিন থাকবে ৫.৪ ইঞ্চি। ১৩ই অক্টোবর মঙ্গলবার অ্যাপল প্রধান টিম কুক অনলাইন ইভেন্টটি শুরু করেন হ���মপড মিনি ডিভাইস উন্মোচনের মধ্য দিয়ে। প্রধান নির্বাহী টিম কুক বলেন, "ডাউনলোড ও আপলোডের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করবে ফাইভ জি। আরো হাই কোয়ালিটি ভিডিও স্ট্রিমিং, আরো সংবেদনশীল গেমিং, যোগাযোগের মাত্রায় আরো নতুনত্বসহ অনেক পরিবর্তন আসবে এই প্রযুক্তিতে।" আরো পড়তে পারেন: ফাইভ-জি কি টেলিভিশনকে গিলে ফেলবে? আপনার পকেটের ফোনে লুকিয়ে থাকা গুপ্তচর মোবাইল ফোনের বিবর্তনে ভাঁজ করা স্মার্টফোন লিডার সেন্সর সাধারণত সেল্ফ ড্রাইভিং কার প্রোটোটাইপ ব্যবহৃত হলেও অ্যাপল ছবির ফোকাস ঠিক করতে এটি ব্যবহার করছে আর আইফোন ১২-এ নতুন পাঁচ ন্যানোমিটার প্রসেসে তৈরি এ১৪ বায়োনিক চিপ ব্যবহার করেছে অ্যাপল। ফলে আইফোন ১১ সিরিজের চেয়ে বেশি গতি এবং গ্রাফিক্স পাওয়া যাবে আইফোন ১২-এ। আইফোন ১২ সিরিজের সঙ্গে নতুন 'ম্যাগসেইফ' ফিচারও এনেছে অ্যাপল। ডিভাইসটির পেছনে চুম্বক পাত যোগ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ফলে ওয়্যারলেস চার্জিং প্যাডে ডিভাইসটি সহজে সঠিক স্থানে বসাতে পারবেন গ্রাহক। আর আইফোনের নতুন মডেলের প্রান্তগুলো আগের মডেলগুলোর তুলনায় অপেক্ষাকৃত তীক্ষ্ণ হবে বলে জানানো হয়েছে। যেসব পরিবর্তন আসছে নতুন আইফোনে চার্জার বিহীন ফোন এই প্রথমবারের মত আইফোনের সাথে কোনো চার্জার অথবা হেডফোন দেয়া হচ্ছে না। অ্যাপল জানিয়েছে, পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কমানোর জন্য এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অপেক্ষাকৃত বেশি দামী আইফোন ১২ প্রো মডেলে স্ক্রিনটি বড় থাকবে এবং কম আলোয় ছবি তোলার সুবিধার্থে নতুন সেন্সর ব্যবহার করা হবে। ওএলইডি ডিসপ্লেটি নতুন ধরণের পদার্থ দিয়ে সুরক্ষা দেয়া হয়েছে, যেটি সহজে ভাঙ্গবে না সিরামিক শিল্ড অ্যাপল জানিয়েছে, আইফোন ১২'তে আগের মডেলগুলোর মত ৬.১ ইঞ্চি (১৫.৫ সেমি) স্ক্রিন রয়েছে, তবে এখন জমকালো রঙয়ের সেটগুলোর জন্য এলসিডি'র বদলে ওএলইডি প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। অ্যাপল বলছে, এর কারণে নতুন আইফোন আগের চেয়ে ১১% বেশি সরু করে তৈরি করা সম্ভব হয়েছে তাদের জন্য। তারা আরো জানিয়েছে যে নতুন সেটের স্ক্রিন বেশি রেজোলিউশনের এবং এতে ডিসপ্লের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে 'সিরামিক শিল্ড' ব্যবহার করা হয়েছে যার ফলে হাত থেকে পড়ে যাওয়ার হিসেবে আগের চেয়ে 'চার গুণ বেশি' সুবিধা পাওয়া যাবে। ডেপথ সেন্সর অপেক্ষাকৃত বেশি দামী মডেলগুলোতে বড় আকারের ডিসপ্লে অন্তর্ভূক্ত করার জন্য সেগুলোকে নতুন করে ডিজাইন করা হয়েছে - আইফোন প্রো'এর স্ক্রিন ৫.৮ ইঞ্চি থেকে ৬.১ ইঞ্চি এবং প্রো ম্যাক্সের স্ক্রিন ৬.৫ ইঞ্চি থেকে ৬.৭ ইঞ্চি। এছাড়াও এই সেটগুলোতে 'লিডার' (লাইট ডিটেকশন অ্যান্ড রেঞ্জিং) স্ক্যানার সংযুক্ত করা হয়েছে। অপেক্ষাকৃত বেশি দামী মডেলগুলোতে বড় আকারের ডিসপ্লে অন্তর্ভূক্ত করার জন্য সেগুলোকে নতুন করে ডিজাইন করা হয়েছে এর ফলে ফোনের আশেপাশের পরিবেশের জন্য একটি ডেপথ ম্যাপ তৈরি হয়, যার ফলে কম আলোতে অটোফোকাস 'ছয় গুণ দ্রুততায়' করা সম্ভব। এছাড়া অগমেন্টেড রিয়েলিটির কাজ করার জন্যও এই সেন্সর ব্যবহৃত হতে পারে, যদিও এই ক্ষেত্রে খুব বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়নি। ফাইভ জি স্যামসাং ২০১৯ সালে গ্যালাক্সি এস ১০ ফোন বাজারে ছাড়ে যা ফাইভ জি নেটওয়ার্কে কাজ করে এবং এর পর হুয়াওয়ে, ওয়ান প্লাস ও গুগলও এই ধরণের ফোন বাজারে ছাড়ে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেসব ফোন সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ খুব একটা বেশি নেই। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফরেস্টারের টমাস হাসন বলেন, "অ্যাপল সাধারণত নতুন প্রযুক্তি বাজারে আনে না, তারা একটি প্রযুক্তি পরিপক্ক হওয়ার জন্য অপেক্ষা করে এবং ব্যবহারকারীদের সুবিধার্থে সেই প্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ করে।" অ্যাপল বলছে তাদের নতুন হোমপড মিনি আগের চেয়ে বেশি থার্ড পার্টি স্মার্ট স্পিকার নিজেদের স্মার্ট স্পিকার 'হোমপড মিনি'র একটি নতুন ভার্সনও বাজারে ছেড়েছে অ্যাপল। এটি আরো ব্যাপক পরিসরের ভয়েস কমান্ড সমর্থন করে। পাশাপাশি এটিতে একটি হোম ইন্টারকম সিস্টেমও রয়েছে। অ্যাপলের প্রথম হোমপড ২০১৮ সালে বাজারে ছাড়া হয়, তবে এখন পর্যন্ত অ্যামাজন ও গুগলের স্পিকারের তুলনায় এটি অনেক পিছিয়ে রয়েছে। ফাইভজি নেটওয়ার্ক সুবিধাযুক্ত নতুন চারটি মডেলের আইফোন উন্মোচন করেছে অ্যাপল। অ্যাপল নিশ্চিত করেছে ফাইভ জি নেটওয়ার্কে কাজ করা তাদের প্রথম হ্যান্ডসেট হতে যাচ্ছে আইফোন ১২। +text: গেইল ম্যককরমিক বলছেন 'ট্রাম্পের সমর্থন দিবে শুনে আমার তাকে বিশ্বাসঘাতক মনে হচ্ছিল' যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেওয়ায় ২২ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টেনেছেন গেইল ম্যাককরমিক নামের ৭৩ বছর বয়সী এক নারী। বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাদের এক প্রতিবেদনে বলছে, গেইল ম্যাককরমিক ক্যালিফোর্নিয়ার একজন অবসরপ্রাপ্ত কারারক্ষী। মিস ম্যককরমিক জানিয়েছেন গত বছর তার স্বামী বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা ও মধ্যাহ্নভোজের সময় ট্রাম্পকে ভোট দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন বলে জানান। স্বামীর মুখে একথা শুনে হতবাক হয়ে যান ম্যাককরমিক! কারণ ট্রাম্পের প্রতি স্বামীর সমর্থনকে 'বিশ্বাসঘাতকতা' হিসেবেই দেখেছেন তিনি। গেইল ম্যাককরমিক বলছেন, 'ভাবতেই পারছিলামনা সে ট্রাম্পকে ভোট দেবে। মনে হচ্ছিলো নিজেই নিজেকে বোকা বানিয়ে ফেললাম! এতগুলো বছর এক ছাদের নিচে থেকে এরকম কোন অভিজ্ঞতার মুখে পড়িনি। সেসময় আমার উপলব্ধি হলো বিয়ের পর আসলেই কত কিছু বদলে গেছে। কম বয়সে অনেক কিছু কখনও মেনে নিতাম না অথচ যে বিয়ের পর সেসব অনেক কিছুই গ্রহণ করে এসেছি আমি! মনে হলো সব বিষয়ে আমার দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করতে হবে। তাই আলাদা হয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম"। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে আলোচিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার কারণে আমেরিকায় ঘরে ঘরে বিভক্তি তৈরি হয়েছে -এমনটা বলছেন অনেক বিশ্লেষক। আর অনেক আমেরিকানের মতে, তাদের আবেগে এতটা ক্ষত কখনও তৈরি হয়নি। আরো পড়ুন: বিমানবাহিনীকে ‘যুদ্ধের প্রস্তুতি’ নিতে বললেন পুতিন ব্রিটেনে ৩০টি গীর্জার স্কুলে পড়ুয়া অধিকাংশই মুসলিম কুমিরের বাচ্চা ‘উধাও হবার’ রহস্যের সমাধান প্রেমিকাকে খুনের অভিযোগ, মিললো বাবা-মায়ের কঙ্কালও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার কারণে আমেরিকায় ঘরে ঘরে বিভক্তি তৈরি হয়েছে -এমনটা বলছেন অনেক বিশ্লেষক। ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন ও সম্পর্কের অবনতি বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাদের এক জরিপে একাধিক মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে কথা বলেছে এবং তাদের কাছ থেকে পেয়েছে বেশ আবেগি কথাবার্তা। গত ২৭ ডিসেম্বর থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত চালানো রয়টার্সের ওই জরিপে ৬,৪২৬ জন অংশ নেয়। জরিপের ফলাফলে বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে বিতর্কে জড়ানোর হার নির্বাচনের পর অন্তত ছয় শতাংশ বেড়েছে। আর একই বিষয়ে পরিবারের সদস্য অথবা বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছেন এমন অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা প্রায় ১৬ শতাংশ। ওহাইওর ২৫ বছর বয়সী ট্রাকচালক রব ব্রুনেলো জানান, ট্রাম্পকে সমর্থন জানানোর কারণে পরিবার ও বন্ধুদের প্রবল নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়েছেন। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অন্��� সমর্থকও পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে ফেসবুকে ঝগড়ার কারণে বাল্যবন্ধুর সঙ্গে কথা বলেন না ফিলাডেলফিয়ার ৬৪ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ উইলিয়াম লোমি লোমি বলছেন, 'ট্রাম্পকে সমর্থন জানিয়ে আমার বন্ধুকে কিছু প্রশ্ন করেছিলাম, ওর পছন্দ হয়নি। এ কারণে আমাকে বাজে মেসেজ দিয়েছে। এরপর থেকে আমরা একে অপরের সঙ্গে কথা বলি না।' তবে এই জরিপের বিষয়ে হোয়াইট হাউজকে কিছু বলার অনুরোধ জানানো হলেও তাদের কাছ থেকে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তিনি বলেছেন, 'মানুষ বিশ্বাস করতে পারছে না হিলারিকে হারাতে পারেন ট্রাম্প। নির্বাচনের ফল প্রকাশের প্রায় তিন মাস হতে চললেও এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে বেশ কষ্টই হচ্ছে অনেকের"। ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায়। নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি অনেকের সমর্থন দেয়া না দেয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবার পরও তার বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের বিতর্ক চললেও দীর্ঘ সংসার জীবনের ইতি টানার ঘটনা এই প্রথম চোখে পড়লো। +text: ইয়াঙ্গনে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। নিহত মেয়েটির পরিবার বলছে, সে তার বাড়ি মান্দালয় শহরেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। পহেলা ফেব্রুয়ারি সামরিক বাহিনী ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর থেকেই বিক্ষোভ চলছে মিয়ানমারে। অধিকার রক্ষা সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন বলছে, এ পর্যন্ত যারা প্রাণ হারিয়েছে তাদের মধ্যে অন্তত ২০ জন শিশু। সামরিক বাহিনী বলছে, বিক্ষোভে এ পর্যন্ত ১৬৪ জন নিহত হয়েছে। তবে অধিকাররক্ষা গ্রুপ অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস-এএপিপি এর দাবি, নিহতের সংখ্যা অন্তত ২৬১ জন। এর আগে মঙ্গলবার বিক্ষোভাকারীদের মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। তবে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য তারা বিক্ষোভকারীদেরকেই দায়ী করেছে। সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, সহিসংতা এবং অগ্নিকাণ্ডের পেছনে মূলত সেনা অভ্যুত্থান-বিরোধী বিক্ষোভই দায়ী। আরো পড়ুন: মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং নিহতদের স্মরণে মঙ্গলবার এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় তাইওয়ানের তাইপেই শহরের লিবার্টি স্কোয়ারে। মান্দালয়ের শেষকৃত্য সেবা সংস্থার এক কর্মী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন যে, সাত বছর বয়সী ওই শিশুটি বুলেটের ক্ষত�� কারণে মারা গেছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম মিয়ানমার নাউ তাদের প্রতিবেদনে বলছে যে, সেনারা তার বাবাকে উদ্দেশ্য করে গুলি ছোড়ে। কিন্তু সেটি তার পরিবর্তে ওই শিশুটিকে আঘাত করে। কারণ বাড়ির ভেতরে বাবার কোলে বসে ছিল শিশুটি। নিহত শিশুটির নাম খিন মিও চিত। ত্রাণকর্মীরা বলছেন, উদ্ধারকারী দল তাকে দ্রুত চিকিৎসা সেবার আওতায় নিয়ে এলেও শেষ পর্যন্ত আর বাঁচাতে পারেননি। পরিবারের সদস্যরা বলছে তার ১৯বছর বয়সী ভাইকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেনি সামরিক বাহিনী। এক বিবৃতিতে সেভ দ্য চিলড্রেন বলেছে, ওই মেয়েটির মৃত্যুতে তারা "আতঙ্কিত"। এই ঘটনাটি মান্দালয়ে ১৪ বছর বয়সী আরেক শিশু মারা যাওয়ার পর দিনই ঘটলো। "এই দুটি শিশুর মৃত্যুর ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক কারণ নিহত হওয়ার সময় তারা বাড়িতেই ছিল যেখানে তাদের অন্তত সুরক্ষিত থাকার কথা। আসল বিষয়টি হচ্ছে যে, প্রায় প্রতিদিনই এতো শিশু মারা যাচ্ছে যে, বোঝা যাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনীর আসলে মানুষের জীবনের প্রতি কোন সম্মান নেই," গ্রুপটি বলছে। মিয়ানমার সম্পর্কে কিছু তথ্য •১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা পায় মিয়ানমার। আধুনিক ইতিহাসের বেশিরভাগ সময়ই কেটেছে জান্তা শাসনে। •২০১০ সালের পর থেকে নিধি-নিষেধ কমতে থাকে, যার জের ধরে ২০১৫ সালে একটি মুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং এর পরের বছর বিরোধী নেত্রী অং সান সু চির নেতৃত্ব সরকার গঠিত হয়। •২০১৭ সালে পুলিশের উপর রোহিঙ্গা জঙ্গিদের হামলার জবাবে অভিযান শুরু করে সামরিক বাহিনী। যার কারণে ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশে গিয়ে আশ্রয় নেয়। এই ঘটনাকে জাতিসংঘ "জাতিগত নির্মূলের পাঠ্যবইয়ের উদাহরণ" বলে উল্লেখ করে। মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে সাত বছর বয়সী এক কন্যা শিশু নিহত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, গত মাসের সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে জানা-শোনার মধ্যে এটিই সবচেয়ে কম বয়সী ভুক্তভোগী। +text: ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বের হওয়ার প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এই সিদ্ধান্তকে অভ্যুত্থান বলে উল্লেখ করেছেন সিনিয়র বিরোধী এমপিরা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলছেন, নতুন আইন প্রণয়ন করতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে যে, ১০ই সেপ্টেম্বর থেকে স্থগিত হবে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। স্থগিত থাকবে ১৪ই অক্টোবর পর্যন্ত। তখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বের হওয়ার বাকি থাকবে মাত্র ১৭ দিন। আরো পড়তে পারেন: সাংবিধানিক সঙ্কটের মুখে ব্রিটেন রুশদের অ্যাটম বোমার ফর্মুলা দেন যে আমেরিকান চাকরির সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার তরুণী সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে ব্রেক্সিট বিরোধীরা সমালোচকরা বলছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে বাণিজ্য এবং সীমান্ত ইস্যুতে নতুন কোন চুক্তিতে না গিয়েই ব্রেক্সিট কার্যকর করার প্রক্রিয়াকে যাতে ব্রিটিশ এমপিরা বাধাগ্রস্ত করতে না পারেন তা ঠেকাতেই এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সরকার সমর্থকরা অবশ্য বলছেন, ব্রিটিশ ঐতিহ্য অনুযায়ী রাণীর ভাষণ অনুষ্ঠানের জন্য হলেও পার্লামেন্টের কার্যক্রম স্থগিত করাটা জরুরী ছিলো। সরকার কিভাবে পার্লামেন্ট স্থগিত করতে পারে? ব্রিটিশ রাজনীতির নিয়ম অনুযায়ী, রাণীর ভাষণ অনুষ্ঠানের জন্য পার্লামেন্ট ভেঙ্গে না দিয়ে বরং এর অধিবেশন স্থগিত করার নিয়ম রয়েছে। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় প্রোরোগেশন। যার মানে হচ্ছে, সরকার চাইলে পার্লামেন্টের কার্যক্রম স্থগিত করতে পারে এবং হাউস অব কমন্সের এমপি কিংবা হাউস অব লর্ডসের সদস্যদের কেউই এতে বাধা দিতে পারে না। ব্রিটিশ রাজনীতিতে জাক-জমকপূর্ণ অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে রানির ভাষণের অনুষ্ঠান অন্যতম ব্রিটিশ ঐতিহ্য অনুযায়ী, রাণীর বক্তব্যে অনুষ্ঠানের আগে পার্লামেন্ট স্থগিত করা হয়। সাধারণত এর মধ্য দিয়ে পার্লামেন্টারি বর্ষ শুরু হয় এবং ঐদিন ব্রিটিশ রাণী-বর্তমান রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ঘোড়ার গাড়িতে করে বাকিংহাম প্যালেস থেকে সংসদে যান। রাজকীয় মুকুট পড়ে তিনি হাউস অব লর্ডসে প্রবেশ করেন। সেখানে স্বর্ণ-সিংহাসনে আরোহণ করেন তিনি। তলব করেন হাউস অব কমন্সের এমপিদের। তবে এর আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী যে সব নতুন আইন পাস করতে চান সে সম্বলিত একটি ভাষণ পড়ে শোনান রানি। এই ভাষণ সাধারণত সরকারের পক্ষ থেকেই লেখা হয়ে থাকে। স্বর্ণ সিংহাসন থেকে ভাষণ পড়ে শোনাচ্ছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ১৬ শতক থেকে এই ঐতিহ্য চলে আসছে। এখন বছরে এক বার করে এটি পালন করা হয়। তবে শুরু থেকেই এটি ঐতিহ্যের অংশ হিসেবেই পালিত হচ্ছে। এটি অনুষ্ঠানের লিখিত কোন নিয়ম-কানুন বা দিনক্ষণ ঠিক করা নেই। তবে ২০১৭ সাল থেকে রাণীর ভাষ��ের এই অনুষ্ঠানটি বন্ধ রয়েছে। পার্লামেন্ট স্থগিতের সময় নিয়ে এতো বিতর্ক কেন? পাঁচ সপ্তাহের জন্য ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সব কার্যক্রম স্থগিত থাকবে সরকারি এই সিদ্ধান্তের সমালোচকরা বলছেন, ব্রিটিশ এমপিরা যাতে ব্রেক্সিট নিয়ে কিছু বলতে না পারে তা রোধ করতেই এই সময়টাকে ইচ্ছাকৃতভাবে বেছে নিয়েছে সরকার। বিরোধীদল লেবার পার্টির ছায়া চ্যান্সেলর জন ম্যাকডোনেল বলেন, "ভুল করবেন না, এটি একটি ব্রিটিশ অভ্যুত্থান।" "ব্রেক্সিট নিয়ে যার যা-ই অভিমত থাকুক না কেন, যখন একজন প্রধানমন্ত্রীকে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পূর্ণ এবং মুক্ত পরিচালনা বাধাগ্রস্ত করার অনুমতি দেয়া হয় তখন ধরেই নিতে হবে যে, এনিয়ে সম্পূর্ণ অনিশ্চিত পথে রয়েছেন আপনি।" তিনি বিশ্বাস করেন যে, প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন 'নো-ডিল ব্রেক্সিটে'র বিরুদ্ধে পার্লামেন্টের ভোট দেয়া ঠেকানোর চেষ্টা করছেন। বর্তমান আইন অনুযায়ী, ৩১ অক্টোবর ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে ব্রিটেনের। তবে, ইইউ-এর সাথে বাণিজ্য এবং সীমান্ত নিয়ে কোন চুক্তি চূড়ান্ত আগ পর্যন্ত এই তারিখ পেছাতে আগ্রহী অনেক এমপি। তবে পার্লামেন্ট যদি আগামী ৫ সপ্তাহ বন্ধ থাকে তাহলে আর এটি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ হয়ে যাবে। হাউস অব কমন্সের স্পিকার জন বারকো সরকার স্থগিতের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন হাউস অব কমন্সের স্পিকার জন বারকোও এই মতের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন। তিনি বলছেন, "এই পদক্ষেপ সংবিধানের অবমাননা।" তিনি বলেন, "যেভাবেই এটিকে পরিবেশন করা হোক না কেন, চোখ বন্ধ করে বলে দেয়া যায় যে, পার্লামেন্ট স্থগিতের উদ্দেশ্যই হচ্ছে অধিবেশনে ব্রেক্সিট নিয়ে বিতর্ক বন্ধ করা।" "এই মুহূর্তে জাতীয় ইতিহাসে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং সময়গুলোর একটি পার করছে ব্রিটেন। পার্লামেন্টের নিজস্ব মতামত দেয়াটা জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে।" নাকি পরিস্থিতি স্বাভাবিক? এই সিদ্ধান্ত কি গণতন্ত্রের প্রতি একটি অপমান কিনা এবং একইসাথে এমপিদের বিতর্ক এবং ব্রেক্সিট নিয়ে একটি সম্ভাব্য ভোটাভুটির পথ বন্ধ করে দেবে? এর উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, "না। এটা একেবারেই সত্য নয়।" বরিস জনসন বলছেন, পার্লামেন্ট স্থগিতের সাথে ব্রেক্সিটের কোন সম্পর্ক নাই তিনি বলেন, এর একমাত্র উদ্দেশ্যই হলো সরকারের নতুন এজেন্ডা তুলে ধরা। "আমাদের নতুন আইন প্র���়োজন। সামনের দিকে এগিয়ে যেতে আমরা নতুন এবং গুরুত্বপূর্ণ বিল উত্থাপন করবো। আর এজন্যই রাণী সংসদে তার ভাষণ দেবেন এবং এটি ১৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। নতুন কর্মসূচী নিয়ে সামনে এগিয়ে যাবো আমরা।" তবে প্রধানমন্ত্রীর অনেক সমর্থকও স্বীকার করেছেন যে, সময় নির্ধারণ কিছুটা হলেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার সময়সূচি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। "আমি এটা নিয়ে নিশ্চিন্ত। কারণ আমার মনে হয় বরিস জনসন সেটাই করছেন যেটা ব্রেক্সিট কার্যকর করতে করাটা জরুরী। পুরো দেশ এটাই চায়। এজন্য পুরো দেশ ভোট দিয়েছিলো," বলেন কনজারভেটিভ এমপি পওলিন লাথাম। বিভক্ত দেশ প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে বৈধ অথবা গণতন্ত্রের পরিপন্থী-ব্রিটিশরা একে যেভাবেই দেখুক না কেন শেষমেশ যে বিষয়টি সামনে আসে তা হলো: ব্রেক্সিট। এই ইস্যুটি ব্রিটেনকে বিভক্ত করেছে। এটি শুধু সামাজিক প্রেক্ষাপটেই বিভক্তি তৈরি করেনি বরং পুরনো রাজনৈতিক দলগুলোর আনুগত্যেও বিভক্তি নিয়ে এসেছে। যারা ব্রেক্সিট সমর্থন করেন তাদের জন্য, পার্লামেন্ট স্থগিতের এই সিদ্ধান্ত শেষমেশ ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হওয়ার ছোট মূল্য মাত্র। ব্রেক্সিট রুখতে এর বিপক্ষে বিক্ষোভ করেছেন অনেক ব্রিটিশ নাগরিক অন্যদিকে যারা ব্রেক্সিটের বিপক্ষে তাদের কাছে এই সিদ্ধান্ত ব্রিটিশ গণতন্ত্রের মূলে আঘাত করেছে। অনেক ব্রিটিশ নাগরিক যারা ইইউ ত্যাগ করার পক্ষে, তারা অভিযোগ তুলেছেন যে, ব্রিটিশ জনগণের মতামত উপেক্ষা করে পার্লামেন্টের অনেক এমপি ব্রেক্সিট রুখে দিতে চান। ব্রিটিশ নাগরিকরা ২০১৬ সালে ব্রেক্সিটের পক্ষে ৫২ শতাংশ এবং বিপক্ষে ৪৮ শতাংশ ভোট দেন। এই বিতর্কের মূলে রয়েছে ব্রিটিশ সংবিধান, অন্য দেশগুলোর মতো এর কোন লিখিত রূপ নেই। এর পরিবর্তে এটি আবর্তিত হয়েছে বহু বছরের প্রথা, পার্লামেন্টের নিয়ম-রীতি, আদালতের রায় এবং ঐতিহাসিক রীতি-নীতিকে ঘিরে। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ব্রেক্সিটের পক্ষেও র‍্যালী হয় রাজনীতিবিদেরা যখন সৎ উদ্দেশ্যে দেশ পরিচালনা করতে চান তখন এটা তেমন কোন অসুবিধা তৈরি করে না। কিন্তু ক্রম বিভক্ত ব্রিটেন যেখানে ইইউ ত্যাগ করা না করা নিয়ে বিতর্ক চরমে, যেখানে দু'পক্ষই জয়ের জন্য যেকোনো কিছু করতে রাজি, সেখানে এই পুরনো নিয়ম-কানুন মুখ থুবড়ে পড়ে। সিনিয়র লেবার এমপি ডেম মার্গারেট বাকেট এ বিষয়ে কিছুটা ব��দ্রুপাত্মকভাবেই মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, "পার্লামেন্ট ছাড়া সরকার পরিচালনার ঘটনা আমাদের ইতিহাসে নজির রয়েছে। তবে শেষবার এ ধরণের পরিস্থিতি যখন হয়েছিল, তা শেষ হয়েছিল গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে"। ব্রিটেন ইইউ ছাড়ুক বা নাই ছাড়ুক, অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আগামী আরো অনেক বছর তিক্ত এবং বিভক্ত থাকবে। ব্রিটেনের সরকার এমন এক সময়ে পার্লামেন্ট স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিল যখন ব্রেক্সিট নিয়ে কঠিন সংকটে আছে দেশটি। +text: যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে হচ্ছে প্রতিবাদ শুরুতে কয়েকজন ক্ষমা চাইয়ে বিষয়টি ফয়সালা করতে চাইলেও পরে কয়েকজন ওই ব্যক্তির ওপর চড়াও হন এবং অভিযুক্তকে বাস থেকে নামিয়ে দেন। পুরো দৃশ্যটি পেছনের আসন থেকে মোবাইলে ধারণ করছিলেন আরেক যাত্রী। এই ঘটনার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমে দ্রুতই ছড়িয়ে পরে। সেখানে মেয়েটির সাহসিকতাকে যেমন সাধুবাদ জানানো হয়েছে তেমনি আবার আবার এসেছে নেতিবাচক মন্তব্যও। কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায় এক ব্যক্তি বাসে এক নারীর যাত্রীর অনুমতি না নিয়েই মোবাইলে ছবি তুলছে। পরে ওই নারী প্রতিবাদ জানালে আশেপাশের মানুষজনও ওই ব্যক্তিকে ক্ষমা চেয়ে ছবি মুছে দিতে বাধ্য করেন। আরও পড়তে পারেন: 'ইভ টিজিং-এর শিকার হয়ে' আড়াই বছরে ৪০ আত্মহত্যা বাংলাদেশে কেন 'ইভ টিজিং' থামানো যাচ্ছে না রাতের গণপরিবহনে নারীরা কতটা নিরাপদ? সৌদি নারীদের নীরব প্রতিবাদ, অনলাইন ক্যাম্পেইন 'গালি দেয়, গায়ে হাত দেয়, প্রতিবাদ করলে চাকরি নাই' এর আগে ঢাকার চাঁদনি চক মার্কেটে দোকানিদের দুর্ব্যবহারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছিলেন এক নারী। শুধু ঢাকায় নয়, প্রতিবাদ হচ্ছে ঢাকার বাইরেও। যেমন কয়েকদিন আগেই সিলেটের মৌলভীবাজারে পৌর পার্কে মায়ের সঙ্গে ফুচকা খেতে যান এক স্কুলছাত্রী। তখন স্থানীয় বখাটে তাকে দেখে উত্যক্ত করে ছবি তুলতে চাইলে মেয়েটি ওই বখাটের মোবাইল কেড়ে নিয়ে শার্টের কলার ধরে মারধোর করে। এ বিষয়ে আপনার কোন অভিজ্ঞতা থাকলে শেয়ার করতে পারেন বিবিসি বাংলার ফেসবুক পেজের কমেন্টে কিংবা ইনবক্সে। 'আমি কিন্তু আমি দমে যাইনি, প্রতিবাদ করেছি' ঢাকায় আরেকটি ঘটনায় নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বীথি হক। সম্প্রতি মহাখালী ফ্লাইওভারের কাছে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। রাত হয়ে গিয়েছিল। রাস্তাও বেশ অন্ধকার ছিল। "এমন সময় হঠাৎ একটা ছেলে আমাকে দেখে এমন সব মন্তব্য করলো যেটা সহ্য করার মতো না।" বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, "আমি কিন্তু আমি দমে যাইনি, প্রতিবাদ করেছি।" "ছেলেটা প্রথমে পুরো বিষয়টি অস্বীকার করছিল, আমাকেই উল্টো বিব্রত করার চেষ্টা করেছিল। বলছিল যে, না-আপনাকে দেখে কিছু বলি নাই।" পরে তিনি পুলিশকে ফোন দেন। আর প্রমাণ রাখার জন্য মোবাইলের ভিডিও চালু করেন। "পুলিশ আসতে আসতে সেই লোক ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিল ঠিকই। কিন্তু সে আমার প্রতিবাদে ঘাবড়ে গিয়েছিল। আসলে প্রাথমিক অবস্থায় প্রতিবাদের বিকল্প আর কিছুই নেই।" মিস হক বলেন, "রাস্তাঘাটে নারীদের প্রতিনিয়ত এ ধরণের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। একপর্যায়ে আমার মনে হয়েছে, এ বিষয়গুলোকে আজ ছাড় দিলে কাল অন্য কোন মেয়ের সঙ্গে এর চাইতে গুরুতর কিছু ঘটবে।" নিরাপত্তার শংকা নিয়েই রাতে পথ চলতে হয় নারী যাত্রীদের 'প্রতিবাদের ফলে অভিযুক্তরা ভয়ের মধ্যে থাকে' সমাজে বখাটের বিরুদ্ধে নারীদের এ ধরণের প্রতিবাদের ঘটনাকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস। তার মতে, সামাজিক প্রতিরোধের পাশাপাশি যদি প্রতিবাদ গড়ে ওঠে তাহলে ইভ-টিজিংয়ের পাশাপাশি নারীর ওপর যৌন হয়রানি ও সহিংসতা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, "একসময় মেয়েদের সম্পর্কে বলা হতো যে বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না। কিন্তু এখন বিষয়টা দাঁড়িয়েছে, ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স, মানে নীরবতা ভেঙে বেরিয়ে আসার।" কেন এই প্রতিবাদের ঝড় গুলো এখন বেশি আলোচনায় আসছে, সে সম্পর্কে অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, "এখন পৃথিবীময় সচেতনতা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে, শিক্ষার হার বেড়েছে। মেয়েরা পাসের হারে ছেলেদের ছাড়িয়ে গেছে। এই বিষয়গুলো তাদের প্রতিবাদের শক্তি যোগাচ্ছে।" "আর প্রতিবাদ জানানোর কারণে অভিযুক্তরা একটা ভয়ের মধ্যে থাকে যে এমন করে পার পাওয়া যায়না।" 'ফেসবুক থাকায় প্রতিবাদকারী এখন একা নয়' সাম্প্রতিক সময়ে ইভটিজিং বা যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে মেয়েদের সাহসী প্রতিবাদ জানানোর পেছনে সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমের বড় ধরণের ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস। বিবিসিকে তিনি বলেন, "আগে যেখানে একটি প্রতিবাদের ঘটনা একটি গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতো। এখন সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমের ফলে সেটি ছড়িয়ে পড়ছে। যা অন্য নারীদেরও অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। এটাও এক ধরণের ক্ষমতা।" "ফেসবুকের মাধ্যমে সে বোঝে যে সে একা নয়, আমার মতো অন্যরাও আছে। তখন সে এই দ্বিধা, সংকোচ বা ভয় থেকে বেরিয়ে এসে সচেতন হয়ে ওঠে।" "এই বিষয়গুলো মেয়েটিকে প্রতিবাদ জানানোর শক্তি ও সাহস যোগাচ্ছে। অর্থাৎ শিক্ষা, সচেতনতা ও প্রযুক্তির ব্যবহার এই তিনটি বিষয় মিলে এই নারীরা এখন আগের চাইতে বেশি সোচ্চার হয়েছে। এই প্রতিবাদটা জারি থাকা জরুরি," বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নারীদের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরি করছে। তবে এই ইভ-টিজিংয়ের বিরুদ্ধে শুধু নারীদের নয় বরং সমাজের প্রতিটি পর্যায়ের মানুষের এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস। তিনি বলেন, এ ধরণের ঘটনার জন্য কোনভাবে যেন মেয়েটিকে দায়ী করা না হয়। পরিবার যদি এই সচেতন ভূমিকা রাখে তাহলে নারীর প্রতি এমন অবমাননার চিত্র পুরোপুরি বদলে যাবে। এক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে ঘটনাগুলোকে তদন্তের আওতায় এনে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার ওপরও তিনি জোর দেন। তবে নারী নির্যাতন দমাতে যেসব আইন প্রণয়ন করা হয়েছে সেগুলোর যেন অপব্যবহার না হয় সে বিষয়ে সজাগ থাকার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। যৌন হয়রানি থেকে বাঁচতে ঢাকায় নারীর ব্যাগে ছুরি নারীদের নিরাপত্তায় হেল্প-লাইন: ১০৯ মহিলা ও শিশু-বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে নারীদের নিরাপত্তায় একটি ২৪ ঘণ্টা হেল্প-লাইন সার্ভিস চালু করেছে। নম্বরটি হল ১০৯। এই নম্বরে ফোন করে ইভ টিজিং-সংক্রান্ত অভিযোগ করা যায়। এছাড়া দেশের আইনের কয়েকটি ধারায় ইভ টিজিং বা যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে তিন মাস থেকে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা রয়েছে। সম্প্রতি ঢাকায় একটি বাসে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করলে ওই ছাত্রী প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন। +text: কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের শোভাযাত্রা। (ফাইল ফটো) চার লাইনের ওই পোস্টে রসিকতার ছলে রামায়ণের পরিচিত আখ্যানের সেই অংশটি লিখেছিলেন ওই অধ্যাপক, যেখানে রামচন্দ্র তার স্ত্রী সীতাকে এক পর্যায়ে পরিত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু হিন্দুত্ববাদী ছাত্র সংগঠনের এক সদস্য এই নিয়েই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে। অযোধ্যায় যেদিন রামমন্দিরের ভূমিপুজো করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সেদিনই রাতে ফেসবুকে চার লাইনের একটি ছোট পোস্ট দিয়েছিলেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অনিন্দ্য সেন। এক পুরুষ ও এক নারীর মধ্যে কাল্পনিক কথোপকথনের মাধ্যমে ফেসবুকে তিনি যা লিখেছিলেন, বাংলায় তার অনুবাদ করলে দাঁড়ায়:"এই নাটক সেই ব্যক্তির জন্য - যিনি নিজের স্ত্রীকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন শুধুমাত্র লোকে কী বলবে, সেই ভয়ে।" শেষ লাইনে পুরুষটি বলছেন: "ও তুমি শ্রীরামচন্দ্রের কথা বলছ!" অধ্যাপক অনিন্দ্য সেনের পোস্ট। আরও পড়তে পারেন: ভারতে 'মুক্তচিন্তার' বিশ্ববিদ্যালয়গুলিই কেন টার্গেট 'জয় শ্রীরাম' না বলায় মাদ্রাসা ছাত্রদের মারধর ‘হিন্দুত্ববাদী অভিযুক্তরা অব্যহতি পাচ্ছেন কেন?’ এই পোস্টে হিন্দু দেব-দেবীদের অপমান করা হয়েছে বলে পুলিশের কাছে মামলা দায়ের করেছে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের এক সদস্য। অধ্যাপক অনিন্দ্য সেনের আইনজীবী সব্যসাচী চ্যাটার্জী বলছিলেন, এই পোস্টে কোনোভাবেই রামচন্দ্রের অপমান করা হয় নি। "যদি কোনও লেখা বা পোস্টে শ্রীরামচন্দ্র শব্দটি থাকে তাহলেই যদি বলা হয় যে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা হচ্ছে, তা হলে তো খুব বিপজ্জনক ব্যাপার হয়ে যাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত বলেছে বাক স্বাধীনতা কোনও ভাবেই হরণ করা যায় না," বলছিলেন মি. চ্যাটার্জী। তিনি আরও বলছিলেন, যেসব ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলি এখানে একেবারেই টেঁকে না। রামায়ণের যা পরিচিত আখ্যান, তা বাল্মীকির রচিত রামায়ণ হোক বা কৃত্তিবাসের বাংলা রামায়ণ - বেশিরভাগ রামায়ণেই এই কাহিনীর উল্লেখ রয়েছে যে ১৪ বছরের বনবাস থেকে ফিরে এসে সীতাকে নির্বাসনে পাঠিয়েছিলেন রামচন্দ্র। তাই এটা কোনওমতেই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হতে পারে না বলে মত দিয়েছেন বেদ-পুরাণ নিয়ে গবেষণা করেন এমন একজন অধ্যাপক রোহিণী ধর্মপাল। তার কথায়, "স্বয়ং বাল্মীকিই তো লিখেছেন যে লোকের মুখের কথা শুনেই রাম সীতাকে নির্বাসনে পাঠিয়েছিলেন। এই কথাটাকে যদি ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত বলা হয়, তাহলে তো বাল্মীকির রামায়ণকেই অস্বীকার করতে হয়।" রোহিণী ধর্মপাল যেমন অধ্যাপক অনিন্দ্য সেনের ফেসবুক পোস্টের সঙ্গে মূল রামায়ণের কোনও সংঘাত দেখছেন না, তেমনই নারী আন্দোলনের কর্মী শাশ্বতী ঘোষ বলছিলেন, রামচন্দ্রের সীতাকে পরিত্যাগ করার ঘটনাটি আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে কতটা প্রজাবাৎসল্যের নমুনা, তা নিয়েও অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। "এই ঘটনাটা রামচন্দ্রের প্রজা বাৎসল্যের পরাকাষ্ঠা কী না তা নিয়ে বহু মানুষেরই প্রশ্ন আছে। সীতাকে রাবণ অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল, তাই সীতা সচ্চরিত্র কী না, তা নিয়ে কিছু মানুষ সন্দেহ প্রকাশ করলো আর তিনি স্ত্রীকে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিলেন! এও তো বলেছিল তার প্রজারা যে রাবণের ঘর থেকে এনে যদি সীতাকে প্রাসাদে প্রতিষ্ঠা করেন, তাহলে সাধারণ লোকের ঘরের নারীরা যদি কোনও বেচাল করে, তাহলে তো স্বামীদের কিছু বলার থাকবে না!" বলছিলেন শাশ্বতী ঘোষ। তাই তিনি মনে করেন এই প্রশ্ন তোলা খুবই সঙ্গত। মহাকাব্যের সঙ্গে অধ্যাপক অনিন্দ্য সেনের ফেসবুক পোস্টের কোনও বিরোধ আছে কী না, তা নিয়ে যেমন আলোচনা হচ্ছে, তেমনই কথা হচ্ছে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অজুহাতে বাক স্বাধীনতাই হরণ করার চেষ্টা হচ্ছে কী না, তা নিয়েও। "আমি যতটা বুঝেছি, ওই পোস্টটিতে কিছুটা শ্লেষ ছিল। সেটা নিয়ে এত বড় ইস্যু করার কোনও দরকার ছিল না," বলছিলেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাক্তন উপাচার্য তপোধীর ভট্টাচার্য। তার কথায়, "এর পিছনে একটা রাজনৈতিক অঙ্ক আছে। তারা তো ভারতের সর্বত্রই এধরণের ঝামেলা পাকিয়ে বেড়াচ্ছে। যেভাবে মানুষের টুঁটি টিপে ধরা হচ্ছে, গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে, তাকে যে কী ভাষায় নিন্দা করব বুঝতে পারছি না।" যে ছাত্রটি অধ্যাপক অনিন্দ্য সেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে, তারই অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে আরেক শিক্ষককে কয়েক মাস আগে তিনদিন পুলিশ হেফাজতে থাকতে হয়েছিল। ভারতের শিলচরে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে যে তিনি একটি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে হিন্দুদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন। +text: পি সি সরকার যুক্তরাজ্যের এই দর্শকরা মনে করেছিলেন, তখনই তারা তাদের টেলিভিশনের পর্দায় ভয়াবহ খুনের ঘটনা সরাসরি দেখলেন। তারা ভড়কে গিয়েছিলেন। আতংকিত হয়ে তারা টেলিফোন করছিলেন বিবিসিতে। ঘটনাটি ছিল, কসাইখানায় যেভাবে মাংস কাটা হয়, সে রকম একটি টেবিলে রাখা হয়েছে সতেরো বছর বয়সী এক তরুণীকে। আর রহস্যময় চেহারার এক জাদুকর টেবিলের উপর ঐ তরুণীর শরীর ধারালো ব্লেড দিয়ে দ্বিখন্ডিত করে মাংস কাটছেন। এই পরিস্থিতি এমন একটা উত্তেজনা তৈরি করেছিল যে, কিছু একটা ভুল হয়েছে বলে মনে করেছিলেন অনুষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্তরা। কারণ জাদুকর এবং তার সহকারী ঐ তরুণীকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। তরুনীর শরীর দ্বিখন্ডিত রেখেই জাদুকর তার মুখ এবং মাথা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেন। তখন উপস্থাপক রিচার্ড ডিম্বলবি ক্যামেরার সামনে এসে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেছিলেন। এর ফলাফল যা দাঁড়িয়েছিল, তা হলো আতংকিত দর্শকদের টেলিফোনের ঝড় উঠেছিল। বিবিসি' প্যানোরমা এই অনুষ্ঠানটি করেছিল। আর শ্বাসরুদ্ধকর সেই জাদু দেখাচ্ছিলেন ভারতের জাদুসম্রাট পি সি সরকার। পশ্চিমাদের কাছে এই অনুষ্ঠানকে পি সি সরকারের জন্য একটা অভ্যূত্থান বলা যায়। কারণ সে সময় লন্ডনের ডিউক অব ইয়র্ক থিয়েটার তিন সপ্তাহের জন্য ভাড়া নেয়া হয়েছিল পি সি সরকারের জাদু প্রদর্শনের জন্য। প্রথমে দর্শক পেতে তাঁকে সংগ্রাম করতে হয়েছিল। কিন্তু প্যানোরমার অনুষ্ঠানটি আলোড়ন সৃষ্টি করলে সেটি তাঁর জন্য একটা বড় সুযোগ তৈরি করে দেয়। তিনিও সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন। আকস্মিকভাবে উপস্থাপক যে মাঝপথে অনুষ্ঠান শেষ করে দিয়েছিলেন, সে ব্যাপারে অনুষ্ঠান কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যায় বলা হয়েছিল যে, বরাদ্দ করা বা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মি: সরকার তাঁর জাদু শেষ করতে পারেননি। তাঁর জাদু অতিরিক্ত সময়ে চলে যাচ্ছিল। এই যুক্তি দিয়ে কর্তৃপক্ষ বলেছিল, পরিস্থিতির কারণে ধারালো ব্লেড দিয়ে তরুনীর শরীর দ্বিখন্ডিত করার বিষয়টি সেভাবেই রেখে অনুষ্ঠান শেষ করা হয়েছিল। পরদিন লন্ডনে সংবাদপত্রে প্রথম পৃষ্ঠায় খবর হয়েছিল যে, টিভি পর্দায় মর্মাহত করার মতো একজন তরুণীকে দ্বিখন্ডিত করার ঘটনা দেখানো হয়েছে। কিন্তু পি সি সরকারকে যারা চিনতেন, তারা জানতেন যে, তিনি সময় মেনে চলতেন। নির্ধারিত সময়ের বাইরে তিনি কোনভাবে যেতেন না। তবে প্যানোরমা সেই অনুষ্ঠানের পর লন্ডনে পি সি সরকারের তিন সপ্তাহের শো'র সব টিকেট বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। ইন্দ্রজাল শো নামে পরিচিত এই জাদু পি সি সরকার ১৯৫৫সালে প্যারিসে প্রদর্শন করছেন পি সি সরকারের ছেলেবেলা তাঁর পুরো নাম প্রতুল চন্দ্র সরকার। ১৯১৩ সালের ২৩শে ফেব্রূয়ারি বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার আশেকপুর গ্রামে তাঁর জন্ম হয়। স্থানীয় শিবনাথ হাইস্কুলে তিনি পড়েছেন। তাঁর বাবা ভগবান বন্দ্র সরকার এবং মা কুসুম কামিনী দেবী। দুই ভাইয়ের মধ্যে পি সি সরকার ছিলেন বড়। তাঁর ছোট ভাই অতুল চন্দ্র সরকার। সেই স্কুলে পড়ার সময় থেকেই জাদুবিদ্যায় তাঁর আগ্রহ ছিল। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময়ই তিনি জাদু দেখানো শুরু করেন। তখন খ্যাতিমান জাদুকর গণপতি চক্রবর্তী তাঁর গুরু ছিলেন। তবে জাদুর প্রতি আগ্রহ তাঁর লেখাপড়ায় কোনো সমস্যা সৃষ্টি করেনি। পি সি সরকারের ইন্দ্রোজাল শো তিনি অংকে বেশ ভাল ছিলেন। তিনি ১৯৩৩ সালে তিনি গণিত শাস্ত্রে অনার্স পাশ করে জাদুকেই পেশা হিসেবে নিয়েছিলেন। তাঁর বড় কৃতিত্ব হচ্ছে, তিনি বহু প্রাচীন জাদু খেলার মূল সূত্র আবিস্কার করেছিলেন। পি সি সরকার বিশ্বে জনপ্রিয়তা পেলেন কিভাবে? ভারত বা দক্ষিণ এশিয়া থেকে গিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জায়গা করা বেশ কঠিন ছিল। পি সি সরকার অবস্থান করতে পেরেছিলেন তাঁর কাজের মাধ্যমে। ব্রিটেনে জনপ্র্রিয়তা পাওয়ার অনেক আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে অবস্থান করেছিলেন। ১৯৫০ সালে তিনি আমেরিকান জাদুকর সোসাইটি এবং জাদুকরদের আন্তর্জাতিক সংগঠনের আমন্ত্রণে শিকাগো গিয়েছিলেন জাদু দেখাতে। পি সি সরকারের আরেকটি জনপ্রিয় জাদু ওয়াটার অব ইন্ডিয়া তখন থেকেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রে জনপ্রিয় হয়েছিলেন। ওয়াটার অব ইন্ডিয়া ছিল তাঁর একটি জনপ্রিয় জাদু খেলা। এছাড়া তাঁর আরেকটি জনপ্রিয় জাদু ছিল, একটি দ্রুতগামী ট্রেন আসার ৩৮ সেকেন্ড আগে তিনি হাতকড়া খুলে রেললাইন থেকে মুক্ত হয়ে আসেন। ১৭টি চাবি ব্যবহার করে হাতকড়া বন্ধ করে তাঁকে রেললাইনে রাখা হতো ট্রেন আসার আগে। এ ধরণের অনেক জাদু নিয়ে তিনি ৭০টির বেশি দেশে শো করেছেন। ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে চিকিৎসক তাঁকে অতিরিক্ত ভ্রমণ না পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ উপেক্ষা করে জাপান গিয়েছিলেন শো করতে। ১৯৭১ সালের ৬ই জানুয়ারি পি সি সরকার জাপানে অনুষ্ঠান মঞ্চেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: যে কারণে আফগানিস্তানের কাছে হারলো বাংলাদেশ ক্যান্সার চিকিৎসায় কেমোথেরাপি কতটা কাজে লাগে? ভারতের মহিলা জাদুকর মানেকা সরকারের সাক্ষাৎকার হঠাৎ শত শত দর্শকের টেলিফোনে বিবিসি'র স্যুইচবোর্ড কেঁপে উঠেছিল। সময়টা ছিল ১৯৫৬ সালের ৯ই এপ্রিল রাত স��য়া নয়টা। +text: বৃহস্পতিবার মুখোমুখি বসতে চলেছেন শেখ হাসিনা এবং ড কামাল হোসেন কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে বিএনপির পক্ষ থেকে সংলাপে বসার আহ্বানকে প্রত্যাখ্যান করার পর এখন কেন সংলাপে রাজি হয়েছে আওয়ামী লীগ? আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, ঐক্যফ্রন্টের কারণে সংলাপে রাজি হয়েছে তার দল। "বিএনপির সাথে সরাসরি সংলাপে বসার ব্যপারে আওয়ামী লীগ আগ্রহ প্রকাশ করেনি। বিএনপি রাজনৈতিকভাবে যেহেতু বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের আশ্রয় দেয়া প্রশ্রয় দেয়া এবং এরপর ২০০৪ সালে ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত থাকা---এসব কারণেই বিএনপির সাথে বসার মত যৌক্তিক কোন পরিবেশ ছিল না।" "এখন যেহেতু ঐক্যফ্রন্ট একটা নতুন নেতৃত্ব এসেছে, ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আওয়ামী লীগ বসবে। ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আলোচনা করেই হয়তো আমার মনে হয় যে তারা যদি নির্বাচনে যায়, সে ব্যপারে আমাদের একটা পরামর্শ থাকবে বা আলোচনার মাধ্যমে একটা সিদ্ধান্তে আসবে।" বিশ্লেষকদেরও অনেকে মনে করেন, আওয়ামী লীগের এখন সংলাপে বসার বড় কারণই হচ্ছে, সংলাপটি সরাসরি বিএনপির সঙ্গে হচ্ছে না। বরং হচ্ছে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন একটি জোটের সঙ্গে। তারা বলছেন, যেকারণে আওয়ামী লীগের এতদিনের যে অবস্থান, যে তারা বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায় না, সেটি একভাবে ঠিক রেখেই আলোচনায় বসা যাচ্ছে, সেটি আওয়ামী লীগের জন্য এক ধরনের রাজনৈতিক স্বস্তি। একই সঙ্গে তারা এও মনে করেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকেও হয়তো চাপ রয়েছে সব দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যপারে। কারণ, বিএনপিকে ছাড়া ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের মতো আরেকটি নির্বাচন হলে সেটি হয়ত আন্তর্জাতিক মহল মেনে নেবে না, যা আওয়ামী লীগের জন্য একটি চাপ হয়ে উঠতে পারে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতা যেন নিয়মিত হয়ে ওঠেছে। আরো পড়তে পারেন: নির্বাচন নিয়ে সংলাপ কখনো সফল হয়নি কেন? মোদি কেন বানালেন সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের মূর্তি? ওজন কম বেশি হলে আয়ুও কমে যেতে পারে মোবাইল কেসের ছবি থেকে জানা গেল যেভাবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলছেন, "আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হয়তো একটা চাপ আছে, কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতিমধ্যেই বলেছে যে তারা নির্বাচনে কোন অব��ারভার পাঠাবে না। কোন কারণ বলেনি, কিন্তু এটা একটা ইন্ডিকেশন।" "২০১৪ সালের নির্বাচনটা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মেনে নিয়েছিল, কারণ আওয়ামী লীগ সফলভাবে চিত্রায়িত করতে পেরেছিল যে বিএনপি একটা জঙ্গি দল। কিন্তু এখন গত পাঁচ বছরে দেশে 'গভর্নেন্সের' যে চেহারা! এজন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়---সেটা একটা চাপ হতে পারে," বলেন তিনি। সংলাপে বসার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ভোটারদের মধ্যে আস্থা বাড়াতে সক্ষম হবে বলেও অনেক বিশ্লেষক মনে করেন। গত কয়েক বছর ধরেই আওয়ামী লীগ বলে এসেছে, নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে সংবিধানে যা বলা আছে, সেটিই চূড়ান্ত। ফলে এ নিয়ে সংলাপের কোন দরকার নেই। এ মাসের মাঝামাঝি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর এই জোট যখন তাদের সাত দফা ঘোষণা করে, তখনও আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছিলেন, এ নিয়ে আলোচনার কিছু নেই। ফলে দশম জাতীয় সংসদের অধিবেশন যেদিন শেষ হলো, সেদিন সংলাপে সম্মতি জানিয়ে দলটির ঘোষণায় বিস্মিত হয়েছিল খোদ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টও। কিন্তু বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ মনে করেন, নিজের প্রয়োজনেই আওয়ামী লীগ সংলাপে রাজি হয়েছে। "এটা একটা কৌশল হতে পারে যে সবার সাথে আলাপ আলোচনা করার জন্য সরকার একটা উদ্যোগ নিয়েছে। আরেকটা কারণ হতে পারে যে, তারা হয়তো উপলব্ধি করেছেন, বর্তমান যে সংকট তা সংলাপ ছাড়া সমাধান করা সম্ভব নয়।" "একটা সমঝোতায় এসে যদি সবাই মিলে আমরা একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে পারি, সেটা দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে, তাদের জন্যও মঙ্গলজনক হবে।" গণতন্ত্রের পথে বাংলাদেশের যাত্রার সময় থেকে প্রায় প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নিরসনে সংলাপ বা আলোচনার আয়োজন দেখা গেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফলাফল শূন্য হলেও সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা এবারের সংলাপে সমঝোতার মাধ্যমে সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে বসতে যাচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। নির্বাচনকালীন সরকারসহ ঐক্যফ্রন্টের সাত দফাসহ আরো নানা বিষয়ে আলাপ হবার কথা রয়েছে সেখানে। +text: বাংলাদেশে সমকামীরা ভয়ে তাদের যৌন পরিচয় প্রকাশ করেন না পাবনার চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহসান হাবিব বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে ১৩ বছর বয়সী বালকটির পিতা থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, তাঁর ছেলেকে অন্যায়ভাবে আটক করে জোর করে বিয়ে দেয়া হয়েছে। আরো পড়ুন: কেরানীগঞ্জে ২৭ জন 'সমকামী' আটক করেছে র‍্যাব সমকামী যৌনতা কি অপরাধ? বিবেচনা করবে আদালত মি: হাবিব বলেন, "ওই যুবক ও বালক দুই ধর্মের অনুসারী। তবে হিন্দু রীতি অনুযায়ী পূজা-পার্বণের মাধ্যমে বিয়ে দেয়া হয়েছে বলে বাদী এজাহারে উল্লেখ করেছেন।" তবে এ বিয়ের সাথে সমকামিতার কোন সম্পর্ক নেই বলে পুলিশ ধারণা করছে। "কিছুদিন আগে ছেলেটির বাবা অসুস্থ হলে তার মা সুস্থতা কামনা করে পূজা দিতে চেয়েছিল। পরে তাঁর স্বামী সুস্থ হলেও তিনি স্বপ্নে দেখেন যে একটি মুসলিম ছেলের সাথে তার ছেলের বিয়ে দিলে পরিবারের জন্য ভালো হবে," বলছিলেন চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মি: হাবিব। তিনি আরও বলেন, "যেহেতু ছেলে-ছেলে বিয়ে হয়েছে সেজন্য অনেকে এটাকে সমকামিতা হিসেবে ধরে নিচ্ছে।" এজাহারে ঠিক কোন ধারার কথা উল্লেখ করা হয়েছে কিংবা সুনির্দিষ্টভাবে কী অভিযোগ আনা হয়েছে সেটি জানাতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের বর্ণনা অনুযায়ী, মার্চ মাসের ২৮ তারিখে ১৩ বছর বয়সী ছেলেটি মাদ্রাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়। রাস্তায় বৃষ্টি এলে সে একটি দর্জির দোকানে অপেক্ষা করতে থাকে। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় দর্জি ওই ছেলেটিকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যায় এবং কয়েকদিনের জন্য তাকে থাকতে দেয়। এক পর্যায়ে দর্জির ২৩ বছর বয়সী ছেলের সাথে ১৩ বছর বয়সী ছেলেটিকে ভুল বুঝিয়ে বিয়ে দেয়া হয় বলে পুলিশ উল্লেখ করেছে। কিন্তু বিলচলন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলীর কাছ থেকে কিছুটা ভিন্ন ভাষ্য পাওয়া যাচ্ছে। বালকটিকে পুলিশ 'ভিকটিম' হিসেবে উল্লেখ করলেও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, এ কথিত বিয়ের বিষয়ে উভয় পরিবারই অবগত ছিল। কয়েকদিন আগে গোপনে এ বিয়ে সংগঠিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মি: আলী। তিনি বলেন, "একজনকে পুরোহিত সাজিয়ে হিন্দু রীতিতে গোপনে এ বিয়ে করানো হয়। কয়েকদিন আগে এ বিয়ে হয়েছিল। পরে এ ঘটনা এলাকাবাসী জানতে পারে। এরপর আমি বিষয়টি ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি।" চাটমোহর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বা ইউএনও সরকার অসীম কুমার বিষয়টিকে 'সমকামী বিয়ে' হিসেবে বর্ণনা করেছেন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ঘটনা সম্পর্কে জানার পর পুলিশকে বিষয়টি তদন্ত করতে বলা হয়েছিল। মি: কুমার বলেন, "তদন্তে যে বিষয়গুলো চলে আসছে সেটা হলো আসলেই গে ম্যারেজের (সমকামী বিয়ে) মতো ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে যে তারা সমকামী। এ মুহূর্তে ঐভাবে প্রমাণ করা সম্ভব নয়। তবে সমকামী হিসেবে মোটামুটি প্রতীয়মান হয়েছে।" ইউএনও এবং পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনা সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে খোঁজ-খবর নেওয়া হয়েছে, তবে বিস্তারিত একটি তদন্তও চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশের আইনে পুরুষদের ক্ষেত্রে বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স ২১ বছর। এছাড়া, দেশটিতে সমকামিতাও আইনত নিষিদ্ধ। আরো পড়তে পারেন: স্ত্রীর দেয়া তথ্যে মিলল নিখোঁজ রথীশ চন্দ্রের মৃতদেহ কাশ্মীর নিয়ে আফ্রিদি আর গৌতম গম্ভীরের বাকযুদ্ধ কর্মক্ষেত্রে নারীদের যৌন হয়রানির অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা পাবনায় ২৩ বছর বয়সী এক যুবকের সাথে ১৩ বছর বয়সী একটি বালকের কথিত বিয়েকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়েছে। +text: অ্যামি বলছেন, তার ম্যানেজারই তার উপর নির্যাতন চালিয়েছিল যুক্তরাজ্যের সংগীত জগতে যৌন হয়রানি খুবই ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে রয়েছে, যেখানে ক্ষমতাশালী লোকজন অহরহ এসব ক্ষমতার সুযোগ নেন। এই জগতের অন্ধকার দিক নিয়ে প্রথমবারের মুখ খুলেছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী। অ্যামি (পরিচয় প্রকাশ এড়াতে নামটি পরিবর্তন করা হয়েছে)১৫ বছরে প্রথম এই জগতে পা রাখেন। তিনি বলছেন, আমি অনেক ছোটবেলা থেকেই গান লিখতাম। একদিন একজন আমাকে ইমেইল করে জানালো, তিনি আমাকে সাহায্য করতে চান এবং আমার ম্যানেজার হতে চান। এরপর আমি তার সাথে কাজ করতে শুরু করি। আরো পড়তে পারেন: 'রাখাইনে ৪০টি গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে সেনাবাহিনী' রাশিয়ায় সন্ত্রাসী হামলা থামালো যুক্তরাষ্ট্র গান গেয়ে কিছুটা সফলতাও পান অ্যামি। কিন্তু তারপর থেকেই তার উপর নির্যাতন শুরু হয়। অ্যামি বলছেন, "একদিন তিনি বলেন, তিনি আমার প্রেমে পড়েছেন এবং আমাকে তার মেয়ে বান্ধবী হতে হবে। না হলে তিনি আমার ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দেবেন।'' এরপরের দুই বছর অ্যামির উপর ক্রমাগত নির্যাতন চালিয়ে যান ওই ব্যক্তি, যিনি এখনো সংগীত শিল্পের বড় অবস্থানে রয়েছেন। অ্যামি কি করতে পারবেন আর পারবেন না, তারও একটি তালিকা তৈরি করে দিয়েছিলেন তিনি। এমনকি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলতে বাধা দেয়া হতো তাকে। কিছুদিন পর তার উপর যৌন সহিংসতাও শুরু হয়। একপর্যায়ে গান-টান ছেড়ে নয়টা পাঁচটার একটি চাকরি খুঁজে নেয়ার কথাও ভাবতে শুরু করেন অ্যামি। কোলি হাউল বলছেন, আমি এমন অনেকের কথা জানি, যারা সংগীত জগতে এসে ধর্ষণের শিকার হয়েছে পেশাজীবনের শুরুর দিকে অনেক ব্যক্তির দ্বারা শোষণের শিকার হয়েছিলেন গায়িকা, গীতিকার কোলি হাউল। একবার একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তার নিতম্ব চেপে ধরেন এবং বাজে প্রস্তাব দেন। তারপরেও নিজেকে ভাগ্যবতী বলে মনে করেন মিজ হাউল। কারণ তিনি বলছেন, ''আমি এমন অনেক মেয়েকে চিনি, যার ধর্ষণের শিকার হয়েছে। কারণ এই শিল্পে অনেক পুরুষের কাছেই এমন ক্ষমতা রয়েছে যে, এরকম ঘটনার পরেও তারা বহাল তবিয়তে টিকে থাকতে পারে।'' সংগীত ব্যবস্থাপক ২৯ বছরের ইয়াসমিন লাজোয়ি বলছেন, সংগীত শিল্পে কাজ করা একজন নারীকে আপনি পাবেন না, যিনি কোন না কোনভাবে যৌন হয়রানি বা অপব্যবহারের শিকার হয়েছেন। নিজের জীবনে যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার পর হতাশা থেকেই তিনি অন্য মেয়েদেরও এরকম নির্যাতনের তথ্য সংগ্রহ শুরু করেন। তিনি বলছেন, ''আমি প্রথমে ভেবেছিলাম, হয়তো যৌন হয়রানির কিছু তথ্য আমরা জানতে পারবো। কিন্তু কোম্পানি অফিসেই ধর্ষণ, তরুণীদের মুখমেহনে বাধ্য করা, বড় সংগীত কোম্পানির নিজস্ব অ্যাপার্টমেন্টে ধর্ষণ, নারীদের উপর হামলার মতো তথ্য আসতে শুরু করলো।" ২০ বছর পর নিজের উপর যৌন হয়রানির বিষয়ে মুখ খুলেছেন মিশেল ডে ভিরেস। ইয়াসমিন লাজোয়ি বলছেন, সংগীত শিল্পের এই অবস্থার পরিবর্তন দরকার বড় একটি সংগীত কোম্পানি কর্মজীবন শুরুর পর একজন বয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে তাকে একই অ্যাপার্টমেন্টে থাকতে দেয়া হয়। কিন্তু সেই ব্যক্তি নানাভাবে তাকে যৌন হয়রানি করতো। নগ্ন অবস্থায় তার রুমে চলে আসতো। একপর্যায়ে তার নিজেকে যৌন দাসীর মতো মনে হচ্ছিল। একদিন অফিসের আরেকজন নারী কর্মীকে নিয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে পাঠানো হয়। ওই ব্যক্তির কক্ষে প্রবেশের পর তিনি নিজের লিঙ্গ বের করে বলেন, এসো, আমি তোমাদের দুজনকে নিয়েই যৌন মিলন করতে চাই। এই ঘটনার পর তিনি মামলা করার জন্য আইনজীবীর কাছে যান। কিন্তু সেই আইনজীবী তাকে বলেন, তুমি যদি মামলা করো, তাহলে আর এই শিল্পে টিকতে পারবে না। এরপর চাকরি ছেড়ে দেন মিশেল। ইয়াসমিন লাজোয়ি বলছেন, ''সংগীত ��িল্পে যৌন নির্যাতন আর হয়রানির মতো ঘটনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে আছে। এখানে এমন অনেকেই বড় বড় পদে রয়েছেন, যাদের আসলে থাকা উচিত কারাগারে।'' তিনি বলছেন, এই পরিস্থিতির পরিবর্তন দরকার। এটি চমৎকার একটি পেশা, যেখানে কোনরকম হয়রানি, ভয় বা ধর্ষণের শিকার না হয়েই মেয়েদের কাজ করার মতো পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরী। যুক্তরাজ্য সংগীত জগতের প্রতিনিধি ইউকে মিউজিক বলছে, এসব অভিযোগ তারা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। বিবিসি বাংলার আরো খবর: স্টিভ স্মিথের সাথে কি ব্রাডম্যানের তুলনা করা যায়? পূর্ব জেরুসালেমে তুর্কি দূতাবাস খুলতে চান এরদোয়ান স্টিভ স্মিথের সাথে কি ব্রাডম্যানের তুলনা করা যায়? দু:সাহসিক ভিডিও-তরুণের মৃত্যু, চীনে নানা প্রশ্ন (ভিক্টোরিয়া ডার্বিশায়ার প্রোগ্রামের জন্য জেন ম্যাকেঞ্জির প্রতিবেদন) +text: ঢাকার অনেক রাস্তায় বাসা ভাড়ার বিজ্ঞাপন এভাবে দেয়া থাকে। প্রতি বছরই আগের বছরের তুলনায় কিছুটা বাড়তি ভাড়া গুনতে হয় ভাড়া বাড়ির বাসিন্দাদের। আর সেটি আয় বাড়লেও বাড়ে, আর না বাড়লেও বাড়ে। ঢাকার কাঁঠালবাগান এলাকায় থাকেন নাদিরা জাহান। ১০৮০ বর্গফুটের দুই বেডরুমের একটি বাসায় স্বামী আর সন্তানদের নিয়ে ভাড়া থাকেন তিনি। নাদিরা জানান, নয় বছরের বিবাহিত জীবনে এটি তার তৃতীয় বাসা। প্রতিবারই আগের ভাড়াটিয়ার তুলনায় বেশি ভাড়া দিয়ে উঠেছেন তিনি। সাথে অগ্রিম বাবদ দিয়েছেন দুই মাসের বাড়ি ভাড়া। এর জন্য পাননি কোন রশিদও। নাদিরা জাহান জানান, প্রতিবছরই কিছুটা বাড়তি ভাড়া দিতে হয় তাকে। তিনি বলেন, "প্রথম যে বাসায় ছিলাম সেটিতে ছয় বছর ছিলাম। এই সময়ে কোন ধরণের রঙ করা বা ড্যাম ওয়াল ঠিক করে দেয়া- সেটাও দেয়নি। উল্টো এই সময়ে আমি তিন হাজার টাকা করে বাড়তি ভাড়া দিয়েছি।" "তাদের একটাই যুক্তি ছিল যে এটাতো সব সময়ই হয়," তিনি বলেন। বাড়ি ভাড়া নিয়ে কথা হয়, রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকার বাসিন্দা মাফতুহা মিলির সাথে। তিনি বলেন, ছোট বেলা থেকেই ভাড়া বাড়িতে থাকেন তিনি। আর সম্প্রতি বিয়ের পরও ভাড়া বাড়িতেই উঠেছেন। বাড়তি বাড়ি ভাড়ার কারণে গত দুই বছরে তিনবার বাসা বদলেছেন তিনি। "ভাড়া বাড়লেও বাসার কোন ধরণের উন্নতি করেন না বাড়িওয়ালা। ভাড়াটিয়ারা বাড়িওয়ালাদের কাছে অনেকটাই জিম্মি"। আরো পড়তে পারেন: বাসা-ভাড়ার 'নাটক' করে খুন: সাবেক প্রেমিকাসহ ৪জন আটক বাড়ি ভাড়ার বিরোধ মেটাতে কমিশন গঠনের নির্দেশ যৌনতার বিনিময়ে বাড়ি ভাড়া দিতে চান বাড়ি মালিক "নতুন বছর মানেই ৫০০ টাকা বা ১০০০ টাকা ভাড়া বাড়বে, এটা যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ভাড়া হিসেবে বাড়তি কিছু টাকা দিয়ে আমি যে একটু বাড়তি সুবিধা পাবো সেটাও না।" ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন-ক্যাব এর প্রেসিডেন্ট গোলাম রহমান। "দিন শেষ আমরা ভাড়াটিয়ারা জিম্মি। অনেক সময় এমন আচরণ করে যে থাকলে থাকেন, না থাকলে নাই," বলেন তিনি। অথচ বাড়ি ভাড়া বিষয়ক ১৯৯১ সালের যে আইনটি আছে সেখানে উল্লেখ রয়েছে যে, এক মাসের বাড়ি ভাড়ার পরিমাণের চেয়ে বেশি অর্থ অগ্রিম হিসেবে নেয়া যাবে না। যেকোন ভাড়ার বিনিময়ে রশিদ দেয়ার নিয়ম এবং বাড়ির উন্নয়ন না করে বাড়ি ভাড়া না বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে এতে। রাজাবাজার এলাকার বাড়িওয়ালা শিহাব আহমাদ। তিনি বলেন, বাড়ি ভাড়া বাড়ানো হয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ নানা কারণে। "দ্রব্যমূল্য বলতে শুধু নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নয়, বাড়ি সারানোর সরঞ্জাম রয়েছে। এগুলোরও দাম বাড়ে। আর বাংলাদেশেতে একবার কিছুর দাম বাড়লে আর কমে না।" "অনেক সময় বাড়ি ভাড়ার সাথে বিল যুক্ত থাকলে বিল বাড়লে বাড়ি ভাড়াও বাড়ানো হয়," তিনি বলেন। ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজ্যুমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাব এর হিসাব বলছে, গত ২৫ বছরে বাড়ি ভাড়া বেড়েছে ৪০০ গুণ আর দ্রব্যমূল্য বেড়েছে ২০০ গুন। অর্থাৎ বাড়ি ভাড়া দ্রব্যমূল্যের তুলনায়ও দ্বিগুণ বেড়েছে। ১৯৯০ সালে পাকা ভবনে দুই কক্ষের একটি বাসার ভাড়া ছিল ২ হাজার ৯শ টাকার কিছু বেশি। ২০১৬ সাল নাগাদ তা বেড়ে দাঁড়ায় ২১ হাজার তিনশ টাকার বেশিতে। বাড়িওয়ালারা ভোটার ২০০৭ সালে সিটি কর্পোরেশন বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক একটি নির্দেশনা দেয়। তবে সেটিও কার্যকরে তেমন তোড়জোড় নেই। ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজ্যুমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট গোলাম রহমান বলছেন, বেশরিভাগ ক্ষেত্রে বাড়িওয়ালারা ভোটার হওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে আগ্রহী হয় না সিটি কর্পোরেশন। "তিনি বলেন, বাড়ির যারা মালিক তাদের পলিটিক্যাল ইনফ্লুয়েন্স বা রাজনৈতিক প্রভাব ভাড়াটিয়াদের চেয়ে বেশি। কারণ তারা স্থায়ী বাসিন্দা এবং তারা ভোটার।" "আর তাই তাদের বিরুদ্ধে যায় এমন কোন কথা ভোট প্রার্থীদের জন্য বলার সম্ভাবনা খুব কম," মিস্টার রহমান ২০১৫ সালে বাংলাদেশে বাড়ি ভাড়া নিয়ে বিরোধের কারণ চিহ্নিত করতে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিশন গঠন করার জন্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। অবাস্তব আইন এদিকে, বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণে ১৯৯১ সালের বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনে বাড়ি ভাড়া নির্ধারণে যে নিয়ম-কানুন রয়েছে তা এখন সময় উপযোগী নয় বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আইনজীভী মনজিল মোরশেদ বলেন, "ওই আইনে ভাড়া নির্ধারণের যে পদ্ধতি বলা হয়েছে, সেভাবে ভাড়া নির্ধারণ করলে এখন যে বাড়ির ভাড়া ৩০ হাজার টাকা সেটার ভাড়া আসবে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা।" এতে বাড়ির মালিক এবং ভাড়াটিয়াদের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে আদালতে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিরোধ মেটাতে ভাড়াটিয়ারা আদালতে গিয়ে বছরের পর বছর ধরে ঘোরা, আইনজীবীকে ফি দেয়া-এসব বিষয় এড়াতে চান বলে আদালতে যেতে চায় না। মিস্টার মোর্শেদ বলেন, আইন কার্যকর হওয়ার পর এ সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করতে ৫% মানুষও আদালতে যাননি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংকট কাটাতে হলে ভাড়াটিয়াদের ঐক্যবদ্ধ ও সচেতন হওয়া দরকার। এছাড়া সরকারেরও কিছু দায়বদ্ধতা রয়েছে বলেও মনে করেন তারা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাড়ি ভাড়ার সমপরিমাণ অর্থ দিয়ে যাতে মানুষ বাড়ি বা ফ্লাটের মালিক হতে পারে সে ধরণের প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। এছাড়া ঢাকামুখী মানুষের স্রোত সামলাতে গ্রামেও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার উপর জোর দেয়া জরুরী বলে মত দেন বিশেষজ্ঞরা। আরো খবর: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা হঠাৎ বাড়লো চীন এবং সেই ভাইরাস, যা সবকিছুকেই হুমকিতে ফেলছে প্রথা ভেঙে যৌনকর্মীর জানাজা পড়ালেন মসজিদের ইমাম অনেকেই মালয়েশিয়া যাচ্ছিলেন বিয়ের পাত্রী হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে 'শত্রু সম্পত্তি' নিলামে তুলছে ভারত সরকার রোহিঙ্গা ট্রলারডুবি: নিখোঁজ ৫০ জনকে পাওয়ার আশা ত্যাগ দেওবন্দ 'সন্ত্রাসবাদের গঙ্গোত্রী', বললেন ভারতের মন্ত্রী সিরিয়াকে হুঁশিয়ার করে দিলেন তুরস্কের এরদোয়ান বাংলাদেশে নতুন বছরের শুভেচ্ছা বার্তার সাথে সাথে ভাড়া বাড়ির বাসিন্দাদের কাছে আরো যে খবরটি আসে তা হলো বাড়ি ভাড়া বাড়ানোর খবর। কখনো কখনো এই খবর আসে নতুন অর্থবছরের শুরুতে। রাজধানী ��াকার বাসিন্দাদের জন্য এটি খুবই সাধারণ চিত্র। +text: সকল আন্তর্জাতিক ফ্লাইট এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ করলো সৌদি আরব সৌদি বার্তা সংস্থা এসপিএ আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এক সংবাদে এ কথা জানিয়েছে - যা দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, একটি নতুন ধরনের করোনাভাইরাস বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে - এ খবরের ভিত্তিতেই আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয় সৌদি কর্তৃপক্ষ। খবরে বলা হয়, এই স্থগিতাদেশ পরে আরো এক সপ্তাহের জন বর্ধিত করা যেতে পারে। সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে নাগরিক ও অভিবাসীদের স্বাস্থ্যের নিরাপত্তার দিকে নজর রেখে কর্তৃপক্ষ কিছু নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এতে বলা হয়, আগামী এক সপ্তাহের জন্য (বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া) সকল আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল বন্ধ থাকবে, এই নিষেধাজ্ঞা বৃদ্ধি পেয়ে আরো এক সপ্তাহ বাড়তে পারে। তবে বিদেশী যেসব বিমান সংস্থা এখন বর্তমানে সৌদি আরবে অবস্থান করছে তারা তাদের নিজ দেশের উদ্দেশে ছেড়ে যেতে পারবে। এ ছাড়া আগামী এক সপ্তাহের জন্য সকল স্থল ও সমূদ্রবন্দর দিয়ে সৌদি আরবে প্রবেশও স্থগিত থাকবে, এই নিষেধাজ্ঞা বৃদ্ধি পেয়ে আরো এক সপ্তাহ বাড়তে পারে। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন : 'কাফালা' পদ্ধতিতে পরিবর্তনের ঘোষণা, প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য আইন শিথিল যে সাতটি দেশে এখন বাংলাদেশি কর্মীরা সবচেয়ে বেশি যায় যেসব শর্তে সৌদি আরবে যাওয়ার অনুমতি পাবে বাংলাদেশিরা এতে আরো বলা হয়, গত ৮ই ডিসেম্বর থেকে যারা ইউরোপীয় কোন দেশ থেকে কিংবা যেসব দেশে নতুন সংক্রমণ শুরু হয়েছে সেখান থেকে সৌদি আরবে এসেছেন, তাদেরকে ১৫ দিনের জন্য হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে এবং প্রতি ৫ দিন অন্তর অন্তর কোভিড-১৯ টেস্ট করাতে হবে। যেসমস্ত দেশে নতুন করে কোভিড সংক্রমণ শুরু হয়নি - সেসকল দেশ থেকে পণ্য আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম এই নির্দেশনার আওতামুক্ত থাকবে বলে ঘোষণায় বলা হয়। সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে নিয়মিত এই নির্দেশনাসমূহ পুনর্বিবেচনা করা হবে বলে ঘোষণায় জানানো হয়। বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিকদের বড় অংশটি কাজ করেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে। এক হিসাবে দেখা যায়, সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশীর সংখ্যা ১০ লক্ষেরও বেশি। তবে সৌদি সরকারের এই নির্দেশনার কী প্রভাব সেখানে কর্মরত বাংলাদেশিদের ওপর পড়েছে তা এখনো বোঝা যাচ্ছে না। সৌদি আরব সেদেশে "বিশেষ কিছু ক্ষেত্র ছাড়া" সকল আন্তর্জাতিক ফ্লাইট এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছে। +text: বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে নারীরা রাখছে অনবদ্য ভূমিকা। এমন সময় এই দিবসটি পালন হচ্ছে, যখন বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করতে এবং কর্মক্ষেত্রে সম মজুরির জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। এছাড়া সমাজে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গিরও ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, বিজ্ঞাপনে নারীকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়, তা খুবই বৈষম্যমূলক এবং নারীর জন্য অবমাননাকর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক শেখ মাহমুদা সুলতানা মনে করেন “নারীর অবস্থান এবং বিজ্ঞাপনগুলোতে তাদের যেভাবে দেখানো হয় তা কোনওভাবেই যৌক্তিক নয়”। “আপনি দেখবেন বিজ্ঞাপনগুলোতে নারীদের অবস্থান মূলত অন্দরমহলে। খেয়াল করে যদি দেখি তাহলে আমরা দেখি নারীদের বড় একটা অংশ বাড়ির পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ব্যস্ত আছেন”। বাথরুম পরিস্কারের একটি বিজ্ঞাপনে নারী। “আক্ষরিক অর্থেই নারীদের বিজ্ঞাপনে মেঝে বা বাথরুম পরিস্কারের মধ্যেই আটকে রাখা হচ্ছে। নারী মডেলদের বেশিরভাগ অংশই দর্শকদের সামনে শারিরীকভাবে একদমই বাথরুমে অবস্থান করেন”-বলেন মিস সুলতানা। “এছাড়া একটি সম্মানজনক পরিসরে হয়তো তাদের দেখা যায় তা হলো বাড়ির রান্নাঘর বা ডাইনিং টেবিল । বাড়ির সদস্যদের কোনও একটি নির্দিষ্ট মসলা বা তেল দিয়ে রেঁধে খাইয়ে তারা অনেক প্রশংসা পান”। আর বিজ্ঞাপনে পুরুষদের অবস্থান নিয়ে শেখ মাহমুদা সুলতান বলেন "বেশিরভাগ সময় দেখা যায় বিজ্ঞাপনে পুরুষেেরা খাবার সামনে নিয়ে বসে আছেন, নারীটি দাড়িয়ে আছেন এবং তিনি খাবার বেড়ে দিচ্ছেন। নারী মূলত সেবা দিচ্ছেন"। "অন্যের জন্য কিছু করতেই তিনি সবসময় ব্যস্ত আছেন এমন একটি ভূমিকাতেই তাদের আটকে থাকতে দেখি। সেটাতো আসলে কোনভাবে যৌক্তিক হতে পারেনা"। তাহলে কি বিজ্ঞাপনে নারীর এমন উপস্থাপন সমাজে নারীর ভূমিকা নির্ধারণের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে? শেখ মাহমুদা সুলতানা মনে করেন ‘এটি নেতিবাচক প্রভাবই’। বাংলাদেশের কৃষিকাজে নারীরা বড় একটি ভূমিকা পালন করছে। “কারণ গণমাধ্যম শেখানো ও প্রচারণার একটা ভূমিকা পালন করে। গণমাধ্যমের ব���় একটা কাজ হচ্ছে মানুষকে সচেতন করা। তো সেদিক থেকে দেখতে গেলে গণমাধ্যম নারীকে যেভাবে দেখাচ্ছে বা দেখতে শেখাচ্ছে সেখানে নারীর সত্যিকারের অবস্থান উঠে আসছেনা। সমাজ বিকাশে নারীর যে অবদান সেটা স্বীকৃতি যেমন পাচ্ছেনা আমরা ভোক্তা শ্রেণীও নারীকে সেভাবেই দেখতে শিখছি। এটাতো নেতিবাচকই। সেক্ষেত্রে এ পরিস্থিতি কে নিয়ন্ত্রণ করবে? মিস সুলতানা বলেন “সরকারের এক্ষেত্রে বড় করণীয় আছে। যেমন একটি নীতিমালা হতে পারে। আর নীতিমালা হলে আমরা বুঝতে পারবো সরকার আসলেই নারীকে পণ্য হিসেবে দেখতে চাননা। যারা এ বিজ্ঞাপন নির্মাণের সাথে জড়িত তাদের নিয়ে সরকার বসতে পারেন, ভোক্তা শ্রেণীর সঙ্গেও আলোচনা হতে পারে। আলোচনা তৈরি হলে সরকারের প্রয়াস নির্মাতা শ্রেণীও হয়তো আন্তরিকভাবে নিবেন এবং বদল ঘটানোর ব্যাপারে আন্তরিক চেষ্টা করবেন”। সমতার সংকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাপী আজ পালন করা হচ্ছে বিশ্ব নারী দিবস। +text: ভারত শাসিত কাশ্মীরে সংঘাতপূর্ণ অবস্থা চলছে বহুদিন ধরেই চারশো জনেরও বেশি নির্যাতিত ব্যক্তির লিখিত জবানবন্দীর ওপরে ভিত্তি করে তৈরি তাদের এক প্রতিবেদনে যৌনাঙ্গে মরিচের গুঁড়ো দেয়া, লোহার শিক ঢোকানো বা হাত-পা বেঁধে ঝুলিয়ে রাখার মতো নির্যাতনের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। তবে কাশ্মীরে কাজ করেছেন এমন ভারতীয় সামরিক কর্মকর্তারা এই প্রতিবেদনকে ভিত্তিহীন বলে মনে করছেন। কাশ্মীর কোয়ালিশন অব সিভিল সোসাইটিজ নামে এই সংগঠনটি বলছে, ১৯৯০ সাল থেকে সেনাসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনী যে ভাবে নির্যাতন চালাচ্ছে তা 'অভাবনীয়।' নির্যাতিতদের মধ্যে উগ্রপন্থী বা সাবেক উগ্রপন্থীরা আছে ঠিকই - কিন্তু ৭০ শতাংশই হচ্ছে সাধারণ বেসামরিক নাগরিক। সংগঠনটির প্রধান পারভেজ ইমরোজ বিবিসিকে বলছিলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আটক হবার পর লোকজনের নিখোঁজ হওয়া বা নিরাপত্তা হেফাজতে মুত্যুর ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট হয়েছে - কিন্তু নির্যাতনের ঘটনাগুলো নিয়ে রিপোর্ট হয় নি। কিন্তু তথ্য ঘাঁটতে গিয়ে দেখা গেছে এরকম হাজার হাজার ঘটনা রয়েছে। ভারত-পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণরেখার একদিকে পাহারা দিচ্ছে একজন ভারতীয় সৈন্য "এর কোন বিচার হয়না কারণ আইন করে নিরাপত্তা বাহিনীকে বিশেষ ক্ষমতা দেয়া হয়েছে" - বলেন মি. ইমরোজ। নির্যাতনের শিকার হওয়া ৪৩২ জনের লিখিত বিবৃতি সংগ্রহ করেছে সংগঠনটি। তারা যে সব নির্যাত���ের বর্ণনা দিয়েছেন তার মধ্যে চড়-থাপ্পড়, লাথি, গালিগালাজ যেমন আছে - তেমনি আছে যৌনাঙ্গে বিদ্যুতের শক দেয়া, মলদ্বারে মরিচের গুঁড়ো বা লোহার রড ঢুকিয়ে দেয়া, উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা বা নগ্ন করে তল্লাশির মত ঘটনা। তবে ভারতীয় সেনাবাহিনী অবসরপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা - যিনি কাশ্মীরে বেশ কয়েক বছর দায়িত্ব পালন করেছেন - সেই মেজর জেনারেল কে কে গাঙ্গুলি বিবিসি বাংলাকে বলেন, এরকম নির্যাতন হতেই পারেনা, এসব অভিযোগের সবটাই বানানো। কাশ্মীরের বিভিন্ন অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে ভারত, পাকিস্তান ও চীন "আমি বিশ্বাস করি না। ভারতীয় বাহিনীর ইন্টারপ্রিটেশনে টর্চার নেই" - বলেন মি. গাঙ্গুলি। তবে পারভেজ ইমরোজ বলছেন, যে অফিসাররা এসব অস্বীকার করছেন তারা বিবৃতি দিন। তার পর তার সংগঠন খুঁজে বের করবে যে তারা কাশ্মীরে থাকাকালীন কোন মানবাধিতার লংঘনের ঘটনার সাথে জড়িত ছিলেন কিনা। আটক হওয়া লোকেরা যে নির্যাতনের কথা রঙ চড়িয়ে, বাড়িয়ে বলছেন না তা কীভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে? এ প্রশ্ন করলে মি. ইমরোজ বলেন, "তারা কেন বানিয়ে বলবে? তারা বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন, নির্যাতনের ক্ষতচিহ্নগুলো দেখা হয়েছে, প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথেও কথা বলা হয়েছে। তাদের যে চিকিৎসা হয়েছে সেসব নথিও খতিয়ে দেখা হয়েছে।" আরো পড়তে পারেন: কাশ্মীর নিয়ে ভারত আর পাকিস্তানের লড়াইয়ের কারণ কি? ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর নিয়ে কেন এই বিরোধ ভারতশাসিত কাশ্মীরের মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, গত ২৮ বছরে নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে যাদের নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের ৭০ শতাংশই সাধারণ নাগরিক। +text: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যাম্প করে সর্দি-কাশির চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে ভাইরাসের ব্যাপক সামাজিক সংক্রমণের কারণে এখন ঢাকার বাইরে‌ও প্রত্যন্ত এলাকায় প্রচুর রোগী শনাক্ত হচ্ছে। প্রতিদিনই হাজারো মানুষ আক্রান্ত হওয়ায় মারাত্মক চাপে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসেবে বাংলাদেশে ৬৫৪টি সরকারি এবং ৫০৫৫টি বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারির সময় রোগীর চাপ ও আতঙ্কে সাধারণ রোগীরাও অতি জরুরি না হলে হাসপাতালে যাচ্ছেন না। এমন অবস্থায় বাংলাদেশ ডক্টরস ফাউন্ডেশন বলছে, গত ৮ দিনে চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন ৪১৪ জন, আর মারা গেছেন দুইজন চিকিৎসক। নার্স আক্রান্ত হয়েছেন ১২২জন । এ ছাড়া ৭০ জন মেডিকেল টেকনিশিয়ানও আক্রান্ত হয়েছেন। নোয়াখালী কোভিড হাসপাতালের পরিচালক ড. নিরুপম দাস বলছিলেন, স্বাস্থ্য কর্মীরা আক্রান্ত হওয়ার ফলে আরো হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসা দিতে। তিনি বলছেন "রোষ্টার ডিউটিতে যেখানে একজনকে ৮ ঘন্টা কাজ করতে হয় সেখানে জনবল কম হওয়ার কারণে ১২ঘন্টা পর্যন্ত কাজ করা হচ্ছে"। "বুঝতেই পারছেন, এই গরমে পিপিই পরে এতক্ষণ ডিউটি করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে"। তিনি বলছিলেন এবারে করোনাভাইরাসের ২য় ঢেউয়ের সময় তারা দেখছেন যে তরুণ চিকিৎসকরা বেশি করে আক্রান্ত হচ্ছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে যেসব জায়গায় রোগী কম কিন্তু ডাক্তার বেশি - সেখান থেকে ডাক্তার এনে যেখানে রোগী বেশি সেখানে কাজ করানো হচ্ছে। সব চিকিৎসকদের শিক্ষা-কালীন ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এমনকি যারা ট্রেনিং করছিলেন তারাও পূর্ণকালীন কাজ করছেন। আরো পড়ুন: করোনাভাইরাস ঠেকানোর সুযোগ কতটা কাজে লাগিয়েছে বাংলাদেশ লক্ষণ দেখা দিলে আলাদা থাকতে হবে কীভাবে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক মিলি দে বলছেন, "এখানে মাঝখানে কয়েক মাস চাপ কম ছিল কিন্তু এখন মারাত্মক চাপ। হাসপাতালের ছয়তলা কেবিন বেড ,সেখানে ১০০টা বেড এবং ২০টা আইসিইউ বেড রয়েছে। কোনটাই খালি থাকছে না"। তিনি বলছিলেন "রোগীদের সিরিয়াল এত দীর্ঘ যে একটা বেড খালি হলে সঙ্গে সঙ্গে রোগী ভর্তি করতে হচ্ছে"। মিলি দে বলেন, চিকিৎসকরা বিপদে পড়ছেন যখন জেনারেল ওয়ার্ডে চিকিৎসা দিতে যাচ্ছেন তখন। কারণ একটা করোনা পজেটিভ রোগীর ক্ষেত্রে তিনি পিপিইসহ সব প্রস্তুতি নিয়ে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছেন। "কিন্তু জেনারেল ওয়ার্ডে একটা রোগী এক সপ্তাহ পর জ্বর-কাশি হচ্ছে, তাকে টেস্ট করালে পজিটিভ আসছে। এর মধ্যে যেহেতু আমরা তার সংস্পর্শে গিয়েছি, তাই এভাবেই চিকিৎসকরা বেশি সংক্রমিত হচ্ছে"। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দেশগুলো থেকে আসা মানুষ এবং তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন, তাদের মধ্যেই নমুনা পরীক্ষার বিষয়টি এখনও সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন - সংকটাপন্ন রোগীর জন্য আইসিইউ থেকে এখন বেশি জরুরি হয়ে পড়েছে উচ্চচাপে অক্সিজেন সরবরাহ করা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসেবে দেশের মাত্র ২৩টি সরকারি হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা আছে। বাকী হাসপাতালে চাহিদা পূরণের জন্য রয়েছে প্রায় ১৬ হাজার অক্সিজেন সিলিন্ডার। হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের চেয়ারম্যান এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লেলিন চৌধুরী বলেন, "আমাদের এখানে কোন আইসিইউ বেড ফাঁকা নেই, সাধারণ বেড যেগুলো আছে সেগুলোর কয়েকটা সাধারণ রোগীদের জন্য রেখে, কোভিড রোগীদের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে"। স্বাস্থ্য বিভাগ হিসেবে সারা দেশে সরকারি বেসরকারি মিলে আইসিইউ বেড আছে ১২৫০টি। এর মধ্যে ৮০০টির মত আইসিইউ বেড কোভিড রোগীদের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। ড. লেলিন আহমেদ বলেন "এক বছরের বেশি সময় ধরে এই স্বাস্থ্য কর্মীরা কোভিডের সেবা দিচ্ছেন, তারা এখন মানসিক, শারীরিকভাবে চূড়ান্ত ক্লান্ত এবং হতাশ"। "তারা প্রতিদিন মৃত্যুকে কাছ থেকে দেখছে শুধু তাইনা , তাদের সহকর্মীদের প্রতিনিয়ত কোভিডে আক্রান্ত হতে দেখছেন এবং অনেক ক্ষেত্রে তাদের মৃত্যু দেখছেন"। "এই অবস্থায় স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের মানসিক অবস্থা চাঙ্গা করার জন্য কিছু কাজ করা দরকার। যেমন তাদের এক মাস ডিউটি করলে দুই মাসের বেতন দেয়া এবং ডিউটি প্যাটার্ন পরিবর্তন করে টানা সাত দিন কাজ করার পর সাত দিন ছুটি দিতে হবে। এতে করে তারা কিছুটা মানসিক চাপমুক্ত হবেন" - বলেন মি. আহমেদ। এদিকে সরকারের করোনাভাইরাসের টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য ইকবাল আরসালান বলেন "প্রথম ওয়েভ করোনাভাইরাস মোকাবেলা করার জন্য তখন স্বাস্থ্য কর্মীরা যেভাবে ইমারজেন্সি ভিত্তিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, প্রশাসনের লাল ফিতা ভেঙে তারা মানুষের প্রয়োজনে মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন কাজ করেছিল। " "কিন্তু পরবর্তীতে তাদের কাজের বৈধতা দেয়া হয় নি। এটা তাদের মারাত্মক হতাশ করেছে" - বলেন তিনি। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: পহেলা বৈশাখ থেকে সাত দিনের 'কঠোর' লকডাউন বাংলাদেশে বিজেপির নির্বাচনী প্রচারের গানে বাংলাদেশের ধর্ষণ, সহিংসতার ঘটনা করোনাভাইরাস সংক্রমণের ২য় ঢেউ কেন মারাত্মক, করণীয় কী? প্রাচীন ঢাকাই মসলিন, কীভাবে বোনা হতো কেউ জানে না বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে মৃত্যু সংখ্যা সাড়ে নয় হাজার ছাড়িয়ে গেছে। +text: শ্রীনগর শহরে কয়েকদিন আগে পেট্রোল পাম্পে তেলের জন্য লোকের ভিড় ভারত শাসিত কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দিতো সংবিধানের যে ৩৭০ অনুচ্ছেদ, তা বিলোপের এক���িন আগে রোববার সন্ধ্যে থেকেই রাজ্যের টেলিফোন, মোবাইল এবং ইন্টারনেটের সংযোগ রবিবার সন্ধ্যায়ই বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। কিন্তু এর মধ্যেই বিবিসি হিন্দির একজন সাংবাদিক আমীর পীরজাদা ভারতশাসিত কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর ভেতর থেকে জানাতে পেরেছেন সেখানে কি ঘটছে। টেলিফোনে তিনি বলছেন, কাশ্মীর এখন ক্রোধে ফুটছে। তিনি জানান, "শ্রীনগর এবং কাশ্মীরের উত্তর ও দক্ষিণের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর পাথর ছোঁড়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে সরকারিভাবে এসব খবরের কোন নিশ্চয়তা পাওয়া যায় নি।" রাস্তায় সর্বত্র হাজার হাজার সেনা, পুলিশ ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী টহল দিচ্ছে। সকল রাস্তা বন্ধ। সবখানে জারি হয়েছে কারফিউ। কাউকে ঘর থেকে বের হতে দেয়া হচ্ছে না। ল্যান্ড ফোন, মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট ব্লক করে দেয়া হয়েছে। কাশ্মীরে গত কয়েক দশক ধরেই বিদ্রোহী তৎপরতা ও ভারতবিরোধী বিক্ষোভ চলছে এখন কাশ্মীরে একজনের সাথে আরেকজনের যোগাযোগ করার কোন উপায়ই নেই। আমীর পীরজাদা জানাচ্ছেন, "আমরা শ্রীনগরে আছি, কিন্তু কাশ্মীরের অন্য জায়গায় কি হচ্ছে তা জানার কোন উপায় নেই। কারণ কোন যোগাযোগ নেই। বিপুল পরিমাণ সৈন্য মোতায়েন হয়েছে এবং তারা সবকিছু চেক করছে। পরিচয়পত্র থেকে শুরু করে কে কোথায় যাচ্ছে, কেন যাচ্ছে - সবকিছু চেক করছে। " শ্রীনগর এবং কাশ্মীরের উত্তর ও দক্ষিণের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ এবং পাথর ছোঁড়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে সরকারিভাবে এসব খবরের কোন নিশ্চয়তা পাওয়া যায় নি। তবে আগামী কয়েক দিনে হয়তো কি হচ্ছে তা আরেকটু ভালোভাবে জানা যাবে। সবখানেই উত্তেজনা। লোকজন ক্ষুব্ধ। তারা এখনো বুঝতে চাইছে কী ঘটছে, কী ঘটতে যাচ্ছে, তাদের ভাগ্যে কী আছে। সামনে ঈদ আসছে। মনে করা হচ্ছে ভারত সরকার তখন সাময়িকভাবে কারফিউ তুলে নেবে - যাতে লোকজন উৎসবের আগে কেনাকাটা করতে পারে। আমাদের দেখতে হবে, ঈদের সময় বাড়ির বাইরে এসে নামাজ পড়ার অনুমতি দেয় কিনা। আমরা এখনো তা জানি না। আরো পড়তে পারেন: যেভাবে বদলে যাবে ভারতের অধীন কাশ্মীর মুসলিম-প্রধান কাশ্মীরের চরিত্র বদলানোই মূল লক্ষ্য? কাশ্মীরের জন্য বিশেষ আইন কেন বিতর্কিত? কাশ্মীরে সহিংসতায় বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন তবে জল্পনা চলছে যে আগামী দিনগুলোতে সহিংসতা হয়তো বাড়তে পারে। কাশ্মীরের যোগাযোগ এমনভাবে বিচ্ছিন্ন হ���়ে পড়েছে যে সেখানকার অনেক লোকই এখনো ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের খবর জানেন না। তবে যারা জানতে পেরেছেন তাদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া কী হয়েছে? আমীর পীরজাদাকে প্রশ্ন করেন বিবিসি দিল্লির শালু যাদব। এ ব্যাপারে আমীর পীরজাদা জানান, তারা মঙ্গলবার সকালে কাশ্মীরের উত্তরাঞ্চলে বারামুল্লা জেলায় গিয়েছিলেন, স্থানীয়দের কাছে জানতে চেয়েছিলেন এ খবর তারা জানেন কিনা। অধিকাংশ লোকই বলেছেন, তারা আরো খবরের অপেক্ষায় আছেন, কারণ সবার কথা তারা বিশ্বাস করেন না। আমীর পীরজাদা বলছিলেন, তবে একজন লোকের সাথে তাদের কথা হয়, যার বয়স ৫০-এর কোঠায়। তিনি বলছিলেন, আগে তারা নিজেদের স্বাধীন ভাবতেন, কিন্তু এখন তার মনে হচ্ছে সেই স্বাধীনতা তারা হারিয়ে ফেলেছেন। কাশ্মীর তিনটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে ভারত, পাকিস্তান ও চীন লোকটি বলছিলেন, তারা ভারতের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন, এবং তারা ভারতের গোলামে পরিণত হয়েছেন। আমীর পীরজাদা বলছেন, এটাই কাশ্মীরের লোকদের সাধারণ অনুভূতি। এখানকার মূলধারার রাজনৈতিক নেতারা গৃহবন্দী। তাদেরকে বাড়ি থেকে বেরুতে দেয়া হচ্ছে না। তারা প্রতিবাদ করছিলেন, ভারতের সরকারের কাছে উদ্বেগ জানাচ্ছিলেন, যে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করা উচিত হবে না, এতে হাত দেয়া ঠিক হবে না। সুতরাং এটা স্পষ্ট যে ভারতের সরকার ও ভারতশাসিত কাশ্মীরের মধ্যে যোগাযোগের অভাব ছিল। বিবিসির শালু যাদব তাকে প্রশ্ন করেন, কাশ্মীরের নেতাদের গৃহবন্দী হবার কথা সাধারণ লোকেরা জানেন কিনা। সাংবাদিকরা ছাড়া খুব কম লোকই এ কথা জানেন। এ ব্যাপারে কোন সরকারি ঘোষণাও দেয়া হয় নি। আরও পড়তে পারেন: কাশ্মীর: অনুচ্ছেদ ৩৭০ কেন গুরুত্বপূর্ণ? আদালতে যাবে বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত? কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নিল ভারত সরকার ভারতের সংবিধানের যে ৩৭০ অনুচ্ছেদ, তা বিলোপের একদিন পরও কাশ্মীর কার্যত বাকি বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন। তার মধ্যেও বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ ও নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর পাথর ছোঁড়ার ঘটনা ঘটছে বলে জানাচ্ছেন শ্রীনগর থেকে বিবিসির সাংবাদিক । +text: ফণী রাতে আসবে বাংলাদেশের উপকূলে আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়টি এখনও শক্তিশালী রয়েছে। উড়িষ্যা থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় কিছুটা দূর্বল হতে পারে। কিন্তু কতটা শক্তি হারাতে পারে, তা এখনই তারা ধারণা করতে পারছেন না। তারা জানিয়েছেন, সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় ফণী বাংলাদেশের মংলা থেকে ৫৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড় ফণী সারারাত খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরিশাল অঞ্চল, রাজশাহী, ফরিদপুর এবং ঢাকা হয়ে ভারতের মেঘালয়ের দিকে যেতে পারে বলে আবহাওয়া দপ্তর বলছে। ফণী ভারতের উড়িষ্যায় আঘাত হেনে পশ্চিমবঙ্গের দিকে যাচ্ছে, রাতে আঘাত হানবে বাংলাদেশের উপকূলে, সকল মাছধরা জেলে নৌকাকে সাগরে না যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে কর্মকর্তারা বলছেন, ফণী রাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করলেও আজ দিনেই খুলনাসহ বিভিন্ন উপকূলে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। অনেক জায়গায় ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছে এবং সারাদেশে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ফণী বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করার সময় নীচু এলাকাগুলোতে চার থেকে পাঁচ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, উপকূলের মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেয়াসহ নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগুলো নেয়া হয়েছে। আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আঘাত হানা সবচেয়ে ভয়াল ৫টি ঘূর্ণিঝড় শক্তিশালী হচ্ছে ফণী, ৫-৬ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা ঘূর্ণিঝড়ের কোন সতর্ক সংকেতের কী মানে? ঘন্টায় ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার বেগে ব্যাপক শক্তি নিয়ে ঘূর্ণিঝড় ফণী ভারতের উড়িষ্যায় আঘাত হেনে পশ্চিমবঙ্গের দিকে যাচ্ছে। ঢাকায় আবহাওয়া দপ্তর বলেছে, রাতে বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরাসহ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। +text: তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান সম্প্রতি ঢাকায় এসে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলিত শাভিসলু বলেছেন যে তাদের অস্ত্র আমদানিকারকদের তালিকায় এখন বাংলাদেশকেও পেতে চাইছেন তারা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সাথে সাক্ষাতের পর তিনি জানান, তুরস্কের প্রতিরক্ষা পণ্যের গুনগত মান ভালো, দামে সুলভ এবং বিক্রির ক্ষেত্রে কোন আগাম শর্ত তারা দেন না। অতীতে বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর কাছ থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনতে গিয়ে সমস্যা পড়ে তুরস্ক নিজেই অস্ত্র উৎপাদন শুরু করে, এ কথা জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন যে তুরস্ক প্রযুক্তি হস্তান্তর ও বাংলাদেশের সাথে যৌথ উৎপাদনে যেতেও রাজি আছে। বাংলাদেশের দিক থেকে আন��ষ্ঠানিকভাবে এ প্রস্তাবে রাজি হওয়ার বিষয়ে সরাসরি কোন ঘোষণা না আসলেও বিশ্লেষকেরা মনে করছেন যে প্রস্তাবটি বাংলাদেশ বিবেচনা করতে পারে। তবে তুরস্ক ঠিক কী ধরণের অস্ত্র উৎপাদন করে এবং বাংলাদেশে কোন ধরণের অস্ত্র তারা রপ্তানি করতে চাইছে, তার বিস্তারিত তথ্য কোন পক্ষ থেকেই প্রকাশ করা হয়নি। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যকার সাম্প্রতিক উষ্ণ সম্পর্ক যে বার্তা দিচ্ছে রেচেপ তাইয়েপ এরদোয়ান: রুটি বিক্রেতা থেকে যুদ্ধংদেহী তুর্কী প্রেসিডেন্ট বিশ্বজুড়ে সামরিক ব্যয় বাড়ছে কেন? এরদোয়ান: আরব দেশে তিনি কেন এতো জনপ্রিয়? বাংলাদেশের কাছে অস্ত্র বিক্রি বাড়াতে চায় তুরস্ক অস্ত্র উৎপাদন ও রপ্তানিতে তুরস্কের সক্ষমতা তুরস্কের সরকারি তথ্য বলছে, ২০১৮ সালে তারা ছিলো বিশ্বের ১৪তম বৃহত্তম অস্ত্র রপ্তানিকারক দেশ। তবে রপ্তানি বিষয়ে তুরস্কের সরকারি সংস্থা টার্কিশ এক্সপোর্টার্স অ্যাসেম্বলির প্রকাশ করা তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে অগাস্ট সময়কালে তুরস্কের প্রতিরক্ষা রপ্তানি উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে গেছে। গত বছর একই সময়ের তুলনায় এবার এই সময়ে রপ্তানি কমেছে প্রায় ২৬ শতাংশ। তবে এটিও ঠিক যে একদিকে করোনাভাইরাস মহামারি, অন্যদিকে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে তুরস্কের মুদ্রার অবনমন হয়েছে, পাশাপাশি দেশটিতে বেড়েছে মুদ্রাস্ফীতি এবং বেকারত্বের হার। এর আগের বছরগুলোতে অবশ্য ক্রমশই বাড়ছিল তুরস্কের প্রতিরক্ষাসামগ্রী রপ্তানি। গত বছরের অক্টোবরে সিরিয়ায় কুর্দি মিলিশিয়াদের ওপর হামলার পর থেকে ফ্রান্স, ফিনল্যান্ড, সুইডেন, চেক প্রজাতন্ত্র, নেদারল্যান্ড, স্পেন এবং জার্মানি-সহ অনেক দেশ তুরস্কের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলো। এর আগেই ২০১৮ সালে দেশটির সব রফতানি খাতের মধ্যে প্রতিরক্ষাসামগ্রীর রপ্তানির প্রবৃদ্ধিই ছিলো সবচেয়ে বেশি। ওই বছরই প্রথমবারের দেশটি ২০০ কোটি মার্কিন ডলারের প্রতিরক্ষাসামগ্রী রপ্তানি করতে সক্ষম হয়। এরপর তুরস্ক ২০১৯-২৩ সাল সময়ের জন্য কৌশলগত পরিকল্পনা করে, যাতে ২০২৩ সাল নাগাদ প্রতিরক্ষাসামগ্রীর রপ্তানি ১,০০০ কোটি ডলারে উন্নীত করার কথা বলা হয়। একই সাথে, চাহিদার ৭৫ ভাগ দেশেই উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। গত অগাস্টে যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক ডিফেন্স নিউজ ম্যাগাজিন তাদের টপ গ্লোব��ল ফার্মের তালিকায় স্থান দিয়েছিলো তুরস্কের সাতটি প্রতিরক্ষাসামগ্রী উৎপাদক প্রতিষ্ঠানকে। আবার সুইডেন-ভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউট বা সিপরির তথ্য অনুযায়ী, সামরিক খাতে তুরস্ক গত বছর ব্যয় করেছে ২,০০০ কোটি ডলারের বেশি। তুরস্কের প্রতিরক্ষা খাত নিয়ন্ত্রণ করে মূলত টার্কিশ আর্মড ফোর্সেস ফাউন্ডেশন, যার মূল কর্তৃত্ব প্রেসিডেন্ট রেজেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের হাতে। অত্যাধুনিক রোবট ও ড্রোন বা আনম্যানড অ্যারিয়েল ভেহিক্যাল (ইউএভি) এখন ব্যবহৃত হচ্ছে নানা জায়গায় কী ধরণের অস্ত্র উৎপাদন করে তুরস্ক সামরিক বিষয়ের একজন বিশ্লেষক এবং বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট ফর পিস অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আ ন ম মুনীরুজ্জামান জানান যে তুরস্কের ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রি একটি পূর্ণাঙ্গ শিল্পখাত। "সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর দরকার এমন সব কিছুই তারা এখন তৈরি করে। বাংলাদেশ আগেও সমরাস্ত্র আমদানি করেছে তাদের কাছ থেকে। তাদের প্রযুক্তিও আধুনিক," বিবিসি বাংলাকে বলেন তিনি। তিনি আরও জানান, স্থল বাহিনীর জন্য ট্যাংক, কামান-সহ যুদ্ধাস্ত্র, আর্টিলারি ইকুইপমেন্ট, গোয়েন্দা কার্যক্রম বা নজরদারিতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান থেকে শুরু করে সব কিছু এবং নৌ বাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে সব কিছুই এখন তুরস্ক তৈরি করছে। কোন কোন ক্ষেত্রে কেবল অস্ত্র নয়, বরং অস্ত্র কেনার পর দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষুদ্রাংশ সরবরাহ এবং ব্যাকআপ সার্ভিস দিতে পারে তুরস্ক। এছাড়া, সামরিক কোন বিষয়ে প্রশিক্ষণের দরকার হলে, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া ক্ষেত্রেও তুরস্কের সক্ষমতা তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ওদিকে প্রতিরক্ষা বিষয় বিভিন্ন জার্নাল কিংবা তুরস্কের প্রতিরক্ষা বিষয়ক বিভিন্ন রিপোর্ট থেকে যে ধারণা পাওয়া যায়, তাহলো দেশটি শটগান, রাইফেল, স্নাইপার রাইফেল, লাইট মেশিন গান, হেভি মেশিনগান, ল্যান্ডমাইন, হ্যান্ড গ্রেনেড, রকেট, সেল্ফ প্রপেল্ড গ্রেনেড, অ্যান্টি এয়ারক্রাফট গান-সহ নানা ধরণের অস্ত্র ও সেন্সর তৈরি করে। আবার নিজেদের তৈরি করা ল্যান্ডমাইন ডিটেক্টর ব্যবহার করে সিরিয়ায় সাফল্য পাওয়ার দাবি করেন দেশটির সামরিক বিশ্লেষকরা। তাছাড়া তুরস্কের একটি কোম্পানি এন্টি ড্রোন ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক গান তৈরি ক��েছে, যা কম উচ্চতায় থাকা ড্রোনকে ভূপাতিত করতে সক্ষম বলে জানানো হয়েছে। তবে যেটি নিয়ে এখন সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে, সেটি হলো তুরস্কে বানানো ড্রোন। দেশটির চারটি কোম্পানি ড্রোন উৎপাদন করে থাকে। এগুলোর মধ্যে মেশিনগান এবং গ্রেনেড বহনকারী ড্রোনও রয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে যে আজারবাইজান সাম্প্রতিক যুদ্ধে আরমেনিয়ার বিরুদ্ধে তুরস্কের তৈরি ড্রোন ব্যবহার করে ব্যাপক সাফল্য পায়। এছাড়া, নিজস্ব স্যাটেলাইট এবং ভালো মানের রাডার আছে তুরস্কের। এখন তারা ক্রুজ মিসাইল তৈরির কাজ করছে বলে জানা যাচ্ছে। এর পাশাপাশি নৌ বাহিনীর জন্য তারা যেসব যুদ্ধ সরঞ্জাম তৈরি করছে, তার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি শিপ মিসাইল, লাইটওয়েট টর্পেডো এবং সোনার সিস্টেম। তারা আন্ডারওয়াটার অ্যাটাক ড্রোন তৈরি নিয়েও কাজ করছে। একই সাথে যুদ্ধজাহাজের ইঞ্জিন তৈরি করা শুরু করেছে দু'বছর আগে। সুইডেন-ভিত্তিক সিপরির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ এখনই তুরস্ক থেকে কিছু সামরিক সরঞ্জাম আমদানি করছে। এর বাইরে বাংলাদেশ যেসব দেশ থেকে অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম আমদানি করে, সেব দেশের তালিকায় রয়েছে চীন, ইতালি, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, সার্বিয়া, ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানি। তবে তুরস্ক এখন চাইছে বাংলাদেশ আরও বেশি পরিমাণ সামরিক সরঞ্জাম তাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করুক এবং দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার সাম্প্রতিক সফরে সেই প্রস্তাবই দিয়েছেন। বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারেন: লোকসান জর্জরিত সরকারি খাতের চিনিকল টিকিয়ে রাখা কতটা যৌক্তিক বাংলাদেশেও নতুন করোনাভাইরাস শনাক্ত, মিল আছে যুক্তরাজ্যে পাওয়া ধরনের সঙ্গে বডি ক্যাম ট্রাফিক পুলিশের কাজে কী ধরনের পরিবর্তন আনবে? মাত্র দু'দশক আগে ১৯৯৯ সালেও তুরস্ক ছিলো বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অস্ত্র আমদানীকারক দেশ, আর সেই দেশটিই ২০১৮ সালে এসে বিশ্বের ১৪তম বৃহত্তম অস্ত্র রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে। +text: ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছে ঢাকায় সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের সামনের চত্বরে। সংগঠনটির আমির আহমদ শফি সোমবার এক বিবৃতিতে এই দাবি জানিয়ে বলেছেন, তাঁর ভাষায় গ্রিক দেবির মূর্তি স্থাপন করে বাংলাদেশের শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং ঐতিহ্যে আঘাত করা হয়েছে। তবে এমন বক্তব্যকে গুরুত্ব দেয়ার ���িছু নেই বলে মনে করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেছেন, ভাস্কর্য এবং মূর্তির পার্থক্য না বুঝে বিভিন্ন বক্তব্য দেয়া হচ্ছে। ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছে ঢাকায় সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের সামনের চত্বরে। প্রধান গেট দিয়ে আদালত সীমানায় প্রবেশ করলেই চত্বরে এই ভাস্কর্য চোখে পড়বে। কিন্তু এরইমধ্যে এই ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে বক্তব্য তুলেছে কওমী মাদ্রাসা ভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম এবং ইসলামপন্থী ছোট ছোট কয়েকটি দল। কয়েকদিন ধরে তাদের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বক্তব্য দেয়া হয়। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন ভাস্কর্য এবং মূর্তির পার্থক্য না বুঝে বিভিন্ন বক্তব্য দেয়া হচ্ছে। সোমবার হেফাজতে ইসলামের আমির আহমদ শফি এক বিবৃতিতে বলেছেন, তাঁর ভাষায় গ্র্রিক দেবির যে মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে,সেটি বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং আদর্শিক চেতনার বিপরীত। তাঁর বক্তব্য হচ্ছে, গ্রিক দেবি থেমিসের গায়ে শাড়ি পড়িয়ে, এটিকে বাংলাদেশের ঐতিহ্য প্রমাণের অপচেষ্টা করা হয়েছে বলেও তিনি মনে করেন। এমন অবস্থানের ব্যাপারে যুক্তি তুলে ধরতে গিয়ে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মো: জুনায়েদ বাবুনগরী বলছিলেন, "আমরা ভাস্কর্য এবং কোনো সংস্কৃতির বিরোধী নই। বাংলাদেশের ঐতিহ্য বা ধর্মীয় মূল্যবোধের সাথে মিল রেখে ভাস্কর্যটি করা হলে আপত্তি ছিল না। কিন্তু এটি গ্রিক দেবিকে হায়ার করে এনে করা হয়েছে। সেজন্যই আমাদের আপত্তি।" তবে এমন সব বক্তব্য যৌক্তিক নয় বলে মনে করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেছেন, সারাবিশ্বে যে ভাস্কর্যকে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে দেখা হয় সেটাই এখানে নির্মাণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষ। ভাস্কর্য এবং মূর্তির মধ্যে পার্থক্য বোঝা প্রয়োজন বলেও তিনি মন্তব্য করেন। "ভাস্কর্যটিতে দাঁড়িপাল্লা ব্যবহার করা হয়েছে ন্যায়বিচারের সূচক হিসেবে। দণ্ড বা শাস্তির সূচক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে তলোয়ার। আর চোখ বাঁধা রাখা হয়েছে, এর অর্থ হচ্ছে নিরপেক্ষভাবে বিচার করতে হবে। রোমান আইন থেকেই আমাদের বিচারের বিষয়ের উৎপত্তি। সেজন্যই অন্যান্য দেশের মতো এই ভাস্কর্য করা হয়েছে।" অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেছেন, " হেফাজতে ইসলামের দাবিকে এখন একটু পাত্তা দেয়া হলে তারা পরে দেশের সব ভাস্কর্য নিয়েই ���্রশ্ন তুলবে"। সারাবিশ্বে গ্রীক দেবির যে ভাস্কর্যকে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে দেখা হয় তারই আদলে ভাস্কর্য নির্মাণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। (প্রতীকী ছবি) বাংলাদেশে এর আগেও বিভিন্ন সময় ইসলামপন্থী বিভিন্ন সংগঠন বা দল থেকে ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের ভাস্কর্য বিভাগের শিক্ষক নাসিমুল খবিরও মনে করেন, ভাস্কর্য এবং ধর্মীয় প্রতিমা মিলিয়ে ফেলে এসব বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে। তিনি আরও বলছিলেন, "ভাস্কর্য এবং ধর্মীয় প্রতিমাকে গুলিয়ে ফেলার একটা প্রবণতা আমাদের সমাজে আছে। সেই সুযোগ নেয় ধর্মীয় উগ্রবাদিরা।এখনও তাই হয়েছে"। এদিকে হেফাজতে ইসলাম এই ভাস্কর্য অপসারণের দাবিতে আন্দোলনের কর্মসূচি নেয়ার হুমকিও দিয়েছে। বাংলাদেশে কওমী মাদ্রাসা ভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম এবার ঢাকায় সুপ্রিমকোর্ট চত্বরে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে নতুন নির্মাণ করা ভাস্কর্য অপসারণের দাবি জানিয়েছে। +text: ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে গ্রিসের একটি স্ট্রবেরি খামারে গুলিবিদ্ধ হন বাংলাদেশি ২০ জনেরও বেশি শ্রমিক। ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটসের মামলায় জয়ী হয়েছেন ওই বাংলাদেশি শ্রমিকেরা। বাংলাদেশি ৪২ জন শ্রমিকের পক্ষে রায় দিয়ে প্রত্যেককে ১২ হাজার ইউরো থেকে ১৪ হাজার ইউরো পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য গ্রিক সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আদালত এক রায়ে বলেছে, মানবপাচারের মতো ঘটনা মোকাবেলায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি অধিকারও সুরক্ষায় কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে। ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে গ্রিসের পেলোপন্নেসিয়ান গ্রামের এক স্ট্রবেরি খামারের শ্রমিকেরা তাদের ছয় মাসের বকেয়া বেতনের দাবি জানাতে গেলে সেখানকার একজন সুপারভাইজার তাদের ওপর গুলি চালায়। ওই ঘটনায় ২০ জনেরও বেশি বাংলাদেশী শ্রমিক আহত হয়। এরপর খামার মালিক ও সংশ্লিষ্ট সুপারভাইজারকেও গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রিসের আদালত খামার মালিক ও সুপারভাইজারকে নির্দোষ বলে রায় দেয়। এছাড়া গ্রিসের ওই আদালত ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের পাওনা বেতন পরিশোধ বা কোনো ক্ষতিপূরণও দেয়নি। সেকারণেই এরপর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ক্ষতিপূরণের আশায় দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটসে মামলা করে শ���রমিকেরা। গ্রিসের বাংলাদেশ সমিতির প্রেসিডেন্ট জয়নাল আবেদিন তখন বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছিলেন, "ইউরোপিয়ান কনভেনশন অব হিউম্যান রাইটসের একটি অনুচ্ছেদ, যেখানে দাসত্ব ও জোরপূর্বক শ্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেই অনুচ্ছেদ লঙ্ঘনের দায়ে প্রথমবারের মতো গ্রিসের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ শ্র্রমিকেরা সবাই মিলে মামলাটি করে"। ওই মামলায় নিজেদের পক্ষে রায় পেল ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশি শ্রমিকেরা। আরো পড়ুন: পাকিস্তানকে পতাকা দেখাতে গিয়ে বিপাকে ভারত মৌলভীবাজারে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে ৭/৮ জঙ্গি নিহত কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির জয় তিস্তা চুক্তি নিয়ে মমতার বিরোধিতা কেন? ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকেরা পাওনা বেতন বা কোন ক্ষতিপূরণ পায়নি বলে পরে দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করে তারা। আদালতের এই রায়ক স্বাগত জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। ইউরোপিয়ান এই মামলার অন্যতম একজন আবেদনকারী মোর্শেদ চৌধুরী আদালতের রায়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেছেন "আজকের রায়ে আমরা খুবই খুশি। ওই খামারে বিনা বেতনে শ্রমিকদের ওপর অত্যাচারের পরও যে খামার মালিককে গ্রিক আদালত ছেড়ে দেয় , সেটা আমাদের জন্য খুবই হতাশার ছিল"। "গ্রিসের অর্থনীতিতে যে আমাদের ভূমিকা আছে তা স্বীকার করে আমাদের গুরুত্ব দেবে গ্রিক সরকার" -এমন আশা প্রকাশ করেন মি: চৌধুরী। স্ট্রবেরি খামারে শ্রমিকদের ওপর গুলির ঘটনা তখন ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে। গ্রিসে খামারের কাজে অভিবাসী শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার নির্যাতনের ঘটনা এবং জোরপূর্বক শ্রম আদায়ের বিষয়টিও তখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। গ্রিসে একটি স্ট্রবেরি খামারে বকেয়া বেতন চাইতে গিয়ে বাংলাদেশি যে শ্রমিকেরা গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন, তারা এবার ক্ষতিপূরণ পেতে যাচ্ছেন। +text: কলকাতার সেই পূজামন্ডপে সাকিবকে স্বাগত জানিয়ে পোস্টার বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নেতৃত্ব যেমন সরাসরি বিবিসিকে বলেছেন, ব্যক্তি স্বাধীনতা ও অধিকারের প্রতি সাকিব আরও মর্যাদা দেবেন বলেই তারা আশা করেছিলেন। তবে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ও আরএসএস ভাবধারার সঙ্গে যুক্ত একাধিক নেতা এটাও বলছেন, আজকের বাংলাদেশে যে বাস্তবতা তাতে 'প্রাণের ভয়ে' কার্যত বাধ্য হয়েই যে সাকিবকে ক্ষমা চাইতে হয়েছে এটা তারা বুঝতে পারছেন। ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন আবার মন্তব্য করেছেন, ক্ষমা চাওয়ার মধ্যে দিয়ে সাকিব আসলে হিন্দুধর্মকেই অপমান করেছেন। বস্তুত ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের কলকাতার একটি কালীপূজায় যোগদান এবং তাকে কেন্দ্র করে বিতর্কের ঢেউ এবার বাংলাদেশ পেরিয়ে ভারতেও আছড়ে পড়ছে। ভাষণ দিচ্ছেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা ড: সুরেন্দ্র জৈন একজন 'প্রকৃত মুসলমান' হিসেবে কালীপুজোর অনুষ্ঠানে যাওয়াটাও তার উচিত হয়নি, সোশ্যাল মিডিয়াতে সাকিব আল হাসানের এই বক্তব্য ভারতের হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলোও মোটেই ভালভাবে নিচ্ছে না। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শীর্ষস্থানীয় নেতা ড: সুরেন্দ্র জৈন যেমন বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, সাকিবের মতো তারকা ক্রিকেটারের কাছ থেকে তারা আরও নির্ভীক আচরণ প্রত্যাশা করেছিলেন। ড: জৈনের কথায়, "কালীপুজোয় যাওয়াটা কীভাবে বড় অপরাধ হতে পারে? হিন্দু ও খ্রীষ্টানরা কি মুসলিমদের ইফতার পার্টিতে যোগ দেন না? অনেক হিন্দু তো নামাজেও সামিল হন।" "এটা দুর্ভাগ্যের যে কালীপুজোয় যাওয়ার অপরাধে বাংলাদেশে একজন তারকাকেও প্রাণের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, কিংবা ফেসবুক পোস্টের বাহানায় হিন্দুদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে।" "সাকিব আল হাসানের মতো একজন নন্দিত ক্রিকেটার এই ইসলামী মৌলবাদের নিন্দা করবেন, এটাই আমাদের প্রত্যাশা ছিল। তার কাছ থেকে এই বার্তাটাই চেয়েছিলাম, যে বিভিন্ন ধর্মের সহাবস্থান তখনই সম্ভব যখন পরস্পরের প্রতি সম্মান থাকে।" আরও পড়তে পারেন : ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আর 'কী বা করার ছিল' সাকিব আল হাসানের? ক্রিকেটার সাকিবকে হত্যার হুমকি, একজন গ্রেপ্তার সাকিব বনাম বিসিবি, বাংলাদেশের ক্রিকেটে নিয়মিত ঘটনা কলকাতার 'আমরা সবাই' ক্লাবের পুজো প্রাঙ্গণে সাকিব আল হাসান পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সাবেক সভাপতি ও ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় আবার মনে করছেন, বাংলাদেশের মৌলবাদের বিরুদ্ধে ভারতে যে যথেষ্ঠ প্রতিবাদ দানা বাঁধেনি - সাকিব আল হাসানকে নিয়ে এই বিতর্কে এটাই সবচেয়ে আক্ষেপের বিষয়। তথাগত রায়ের কথায়, "এই যে গর্দান নেওয়ার ভয় দেখিয়ে একজনকে কালীপুজোর উদ্বোধন থেকে নিরস্ত করা হল, তার বিরুদ্ধে ভারতে তেমন কোনও প্রতিবাদ হচ্ছে না এটাই তো সবচেয়ে দু:খের বিষয়।" "ভারতে যারা ধর্মনিরপেক্ষতার বন্যায় ভেসে যাচ্ছেন, সেই তথাকথিত সেক্যুলাররা তো কেউ একবারও বললেন না যে বাংলাদেশে এই যে লোকটি হুমকি দিয়েছে সে একটা ঘোর অন্যায় করেছে?" "সাকিবের যদি কালীপুজো উদ্বোধন করার ইচ্ছে হয় তাহলে তাকে সেটা করতে দেওয়া উচিত, এটা তো তাদের বলা উচিত!" তথাগত রায় সোশ্যাল মিডিয়াতে নানা হিন্দুত্ববাদী পোস্টের জন্য পরিচিত তথাগত রায় অবশ্য বিবিসির কাছে এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ক্ষমা চাওয়ার জন্য তিনি সাকিব আল হাসানকে অন্তত দোষ দিচ্ছেন না। "প্রাণের ভয়ে সে ক্ষমা চেয়েছে, তা সে চাইতেই পারে। কিন্তু তার ওপর হুমকির তো নিন্দা হবে, না কি?" "ভারতে সেই নিন্দাটা যে নেই, এটাই সেক্যুলারদের ভন্ডামিটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। মুসলিমরা কোনও অন্যায় করলে তারা তখন চোখ বন্ধ করে থাকেন", বলছিলেন তথাগত রায়। কলকাতার যে পুজোতে সাকিব এসেছিলেন সেখানে তিনি একজন মুসলিম হিসেবে নন, বরং ধর্মের ঊর্ধ্বে একজন জনপ্রিয় ক্রিকেটার হিসেবে এসেছিলেন - সেটা আয়োজকদের স্পষ্ট করে দেওয়া উচিত ছিল বলেও অনেকে মনে করছেন। আরএসএসের একটি অনুষ্ঠানে সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বক্তৃতারত রন্তিদেব সেনগুপ্ত কলকাতায় আরএসএসের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ভাষ্যকার রন্তিদেব সেনগুপ্তর কথায়, "ধর্মের ওপরেও তো প্রত্যেক ব্যক্তি মানুষের কিছু নিজস্ব স্বাধীনতা বা অধিকার থাকে - এটাকে আমি তার ওপর হস্তক্ষেপ হিসেবেই দেখছি।" "ইসলামী মৌলবাদীরা এ জিনিসটা প্রায়ই করে থাকেন এবং আমি বলব সাকিব আল হাসান তারই সবশেষ শিকার।" "পাশাপাশি বলব, কলকাতার যে পুজো কমিটি তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল তাদেরও তো বিবৃতি দিয়ে বলা দরকার ছিল যে সাকিব আল হাসান সম্পূর্ণত ব্যক্তিগত ইচ্ছায় বা স্বাধীনতায় সেখানে এসেছিলেন।" "তা তিনি পুজো উদ্বোধনই করুন বা শুধু দেখতেই আসুন, তাকে যে একজন ক্রিকেটারের প্রাপ্য সম্মান দিয়েই সেখানে আনা হয়েছিল সেই বিষয়টা পরিষ্কার করা উচিত ছিল।" "তারাও যদি এখন কাপুরুষের মতো ভয়ে গুটিয়ে যান, তাহলে সেই ক্রিকেটারকে তারা এনেছিলেন কেন - আমার প্রশ্ন সেখানেই!" বলছিলেন রন্তিদেব সেনগুপ্ত। কলকাতার ওই পুজোটির প্রধান উদ্যোক্তা ও তৃণমূল নেতা পরেশ পাল অবশ্য ইতিমধ্যেই বিবিসিকে জানিয়েছেন, সাকিব নন - তাদের পুজোর উদ্বোধন করেছিলেন একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, আদ্যাপীঠের মুরালভাই। এদিকে বর্তমানে দিল্লি-প্রবাসী বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন টুইট করেছেন, কালীপুজোয় যাওয়ার জন্য সাকিব আল হাসানের ক্ষমা চাওয়া মোটেই উচিত হয়নি। যে মুসলিমরা পুজোমন্ডপে যান কিংবা হিন্দুদের প্রতি সহানুভূতিশীল, এতে তাদের হত্যা করতে ইসলামী মৌলবাদীরা উৎসাহিত হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন। বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: শীতকালের সঙ্গে করোনাভাইরাসের কী সম্পর্ক? মানসিক স্বাস্থ্য হাসপাতালে বিক্ষোভ, পরিচালক অবরুদ্ধ, জরুরি সেবা বন্ধ বাংলাদেশের ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল অনন্য যেসব কারণে বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান কলকাতার একটি কালীপূজায় যোগ দেওয়ার জন্য সোশ্যাল মিডিয়াতে এসে যেভাবে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন, তার জন্য ভারতের নানা হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীও এখন তার প্রতি হতাশ। +text: আল জাজিরা বন্ধের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ইসরায়েলের যোগাযোগ মন্ত্রী আইয়ুব কারা এক ঘোষণায় চ্যানেলটির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেছেন, আল জাজিরা সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে। জেরুজালেমে এর আরবি ও ইংরেজি শাখার সব সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়া হবে। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আল জাজিরা'র সাংবাদিকদের ক্রেডেনশিয়াল বাতিল করা হবে এবং চ্যানেলটির জেরুজালেম অফিস বন্ধ করে দেওয়া হবে। এর আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আল জাজিরা বন্ধের হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, এই সম্প্রচার মাধ্যমটি 'উস্কানিমূলক খবর' প্রকাশ করে। আল জাজিরা কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে। সন্ত্রাসবাদে মদদ দেয়ার অভিযোগে কাতারের সঙ্গে কয়েকটি আরব দেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার পর তারা কাতারভিত্তিক আল জাজিরা টেলিভিশন চ্যানেলটিও বন্ধ করে দেয়। ইসরায়েলের সরকার বলছে, সুন্নি আরব দেশগুলোর আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। সংবাদ সম্মেলনে যোগাযোগ মন্ত্রী মি: কারা জানিয়েছেন, ক্যাবল টিভি মালিকরা চ্যানেলটি বন্ধে তাদের সহায়তা করবেন, তবে জেরুজালেমে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধের জন্য আরো কিছু কাজ করতে হবে। "দায়েশ (ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠী, হামাস, হিজবুল্লাহ এবং ইরানের কর্মকাণ্ডের প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছে আল জাজিরা। ফলে এর স্যাটেলাইট সম্প্রচার বন্ধ করতে হবে" -সংবাদ সম্মেলনে বলেন ইসরায়েলের যোগাযোগমন্ত্রী। এমন ঘোষণার পর মি: নেতানিয়াহু মি: কারাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে একটি টুইট করেন, "আল জাজিরার উস্কানিমূলক কর্মকান্ড বন্ধের জন্য আমার নির্দেশাবলী মেনে যিনি সঠিক ও শক্ত পদক্ষেপ নিয়েছেন"। ১৯৯৬ সালে আরব বিশ্বের প্রথম ২৪ ঘন্টার সংবাদ চ্যানেল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে আল জাজিরা। কাতারের রাজধানী দোহায় কর্মরত আল জাজিরা'র একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন "মধ্যপ্রাচ্যের এমন একটি দেশ থেকে এই ঘোষণা এলো যাদের কিনা এ অঞ্চলের একমাত্র গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে গণ্য করা হয়। কিন্তু তারা যা করছে তা বিপদজনক"। সম্প্রতি জেরুজালেমের পবিত্র স্থান টেম্পল মাউন্ট বা হারাম-আল-শরিফকে ঘিরে যে সংকট তৈরি হয়েছিল সেখানে সহিংসতা ছড়াতে আল জাজিরা উস্কানি দিয়েছে- এমন অভিযোগ করেছিলেম ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। জেরুজালেমে ওই পবিত্র এলাকায় এক হামলায় দুজন ইসরায়েলি পুলিশ নিহত হবার পর ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ হারাম-আল-শরিফ এলাকায় মেটাল ডিটেক্টর বসিয়ে নিরাপত্তা জোরদার করে। নিরাপত্তা বেষ্টনী বসানোকে কেন্দ্র করে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হয়। তুমুল বিক্ষোভ সহিংসতার পর পর্যায়ে আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গন থেকে মেটাল ডিটেক্টর সরিয়ে নেয় ইসরায়েল। জুলাই মাসের শেষ দিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, "আল জাজিরা জেরুজালেমের উত্তেজনা নিয়ে স্পর্শকাতর সংবাদ প্রকাশ করছে এবং সেখানে তিনি চ্যানেলটির সম্প্রচার বন্ধ করতে চান"। যদিও আল জাজিরা বলেছে, তারা "প্রফেশনাল" এবং সবসময় "সত্য ও বিষয়ভিত্তিক খবর প্রচার করে"। জেরুজালেমে আল জাজিরা নেটওয়ার্কের সম্পাদক এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন, "মি: নেতানিয়াহুর এমন মন্তব্য তার মিত্র আরব দেশগুলোর মতোই বিদ্বেষপূর্ণ ও শত্রুতাপূর্ণ এবং সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর চরম হস্তক্ষেপ"। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: ইসরায়েলে কাতারভিত্তিক সম্প্রচার মাধ্যম আল জাজিরা'র প্রচার বন্ধের পরিকল্পনা করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। +text: চাকরির বাজার নিয়ে দুশ্চিন্তা অনেক শিক্ষার্থীর মাঝে। (ফাইল ছবি) ঢাকার বিভিন্ন ফিল্ম এবং নাটক নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের ফ্রিল্যান্স লাইটম্যান হিসেবে কাজ করতেন মামুন। এখানে আমরা তার ভিন্ন নাম ব্যবহার করছি। এই লাইটগুলোর ভাড়া ও সেট আপের খরচ তার মূল আয়ের উৎস। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর নতুন করে নাটক, শর্ট ফিল্ম নির্মাণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তার মতো এই খাত সংশ্লিষ্ট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অনেকেই বাধ্য হন শহর ছেড়ে গ্রামে পাড়ি জমাতে। "এমনও দিন গেছে দিনে ১৫ হাজার, ২০ হাজার টাকার কাজ করেছি। আমার লাইফস্টাইল ওইরকমই ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস আসার পর কোন কাজ নাই। কতদিন আর জমানো টাকা খাওয়া যায়। বাড়িভাড়া দিতে পারছিলাম না। পরে গ্রামের বাড়িতে চলে যাই।" নতুন বছর এলেও পরিস্থিতি আগের রূপে ফিরে যাওয়া নিয়ে শঙ্কা কাটছে না তার। আবার ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে একদিনের নোটিশে চাকরি হারানোর অভিযোগ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ব্যক্তি। সারাদিনের কাজ শেষে বিকেলে প্রতিষ্ঠানটির মানবসম্পদ বিভাগ থেকে জানিয়ে দেয়া হয় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে কর্মী ছাটাই করতে বাধ্য হয়েছেন তারা। মহামারীর মধ্যে হঠাৎ কাজ হারিয়ে দিশেহারা এই মানুষগুলো। "এখন অনেক অফিস করোনাভাইরাসকে অজুহাত দেখিয়ে লোক ছাটাই করে দিচ্ছে। জব মার্কেটের যেই অবস্থা। নতুন চাকরি কবে পাব। এতদিন কিভাবে চলবো। টাকা হয়তো ম্যানেজ হবে। কিন্তু চাকরি তো আমার একটা পরিচয়, স্ট্যাটাস। সেটা তো হারালাম।" চাকরি হারানোর আশঙ্কায় আছেন অনেকে। আরও পড়তে পারেন: করোনাভাইরাসের কারণে চাকরি হারাচ্ছেন অনেক কর্মী চাকরির জন্য যেসব দক্ষতায় পিছিয়ে তরুণরা চাকরিতে কোটা নিয়ে এত ক্ষোভের কারণ কী? চাকরি প্রত্যাশীদের সামনে যে ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস সংকটের কারণে বাংলাদেশে প্রতি চারজন যুবকের মধ্যে একজন কর্মহীন বা বেকার হয়ে পড়েছেন। আনুষ্ঠানিক খাতে চাকরি করেন এমন ১৩ ভাগ মানুষ কাজ হারিয়েছেন। চাকরি আছে কিন্তু বেতন নেই এমন মানুষের সংখ্যা আরও বেশি। আর ২৫ ভাগ চাকরিজীবীর বেতন কমে গেছে। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বিআইডিএস-এর এক গবেষণায় এসব তথ্য জানা গেছে। নতুন চাকরির সন্ধান যারা করছেন এবং নতুন উদ্যোক্তারাও এই করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি বলছে, করোনাভাইরাসের কারণে কাজ হারিয়ে এক কোটি ৬৪ লাখ মানুষ নতুন করে দারিদ্রসীমার নিচে নেমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে কর্মসংস্থান খাতকে আগের রূপে ফেরাতে কয়েক ধাপে কর্ম পরিকল্পনা হাতে নেয়ার কথা জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। "স্বল্প আয়ের কর্মহারা মানুষ, দিনমজুর তাদের ���ন্য সরকার একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় তাদেরকে সামান্য কিছু টাকা মাসে একবার দেয়া হয়। এই সংখ্যাটা বাড়াবো। এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ও কৃষি খাতে যেখানে অনানুষ্ঠানিক শ্রমিকরা কাজ করে তাদের আর্থিক সহায়তা এই বছর বাড়ানো হবে।" এছাড়া বাজারে করোনাভাইরাসের টিকা চলে আসায় বাজার পরিস্থিতি চলতি বছরের শেষ নাগাদ স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে তিনি আশা করছেন। নতুন বছরে সরকারের সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিদ্যমান ব্যবসা ও চাকরির খাতগুলো টিকিয়ে রাখা এবং নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করা। এক্ষেত্রে সরকার বিভিন্ন খাতে যে প্রণোদনা দিয়েছে সেটা দ্রুত বাস্তবায়নের করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ নাজনিন আহমেদ। নগরের অতি দারিদ্র মানুষগুলোর জন্য সাময়িক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি এবং সরকারের বড় বড় প্রকল্পগুলো অব্যাহত রাখলে কর্মহীন এই মানুষগুলোকে অর্থনীতিতে সম্পৃক্ত করা যাবে বলে তিনি জানান। বাংলাদেশের বেশিরভাগ তরুণ-তরুণীর কাছে সরকারি চাকরির প্রাধান্য বেশি এছাড়া ওষুধ শিল্প ও অনলাইনে ব্যবসার মতো নতুন সম্ভাবনাময় খাতে ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিও জরুরি বলে মনে করছেন নাজনীন আহমেদ। করোনাভাইরাস মহামারীর সময়ে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ কর্মহীন হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে সরকার বিভিন্ন খাতের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে। কিন্তু এখনও বেশিরভাগ প্রণোদনা প্যাকেজ ব্যাংক থেকে ছাড় পায়নি। করোনাভাইরাস সংক্রমণ মানুষের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি কর্মসংস্থান খাতেও বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন বছরে সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে কর্মহীন এই মানুষগুলোকে কাজের আওতায় আনা। +text: মি. বাগউইজা এবং তার স্ত্রী জুলিয়েন কথাগুলো একজন স্বামীর। তিনি বর্ণনা করছেন কিভাবে তিনি তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করতেন, তার সাথে কিরকম আচরণ করতেন। এই স্বামীটির নাম মোইসেস বাগউইজা। গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের পূর্বাঞ্চলীয় গ্রাম রুৎশুরুর বাসিন্দা তিনি। পৃথিবীর যে দেশগুলোতে যৌন সহিংসতার মাত্রা সবচেয়ে বেশি তার একটি হচ্ছে কঙ্গো। তার স্ত্রী জুলিয়েন বাগউইজা বলছেন, তার স্বামীর মেজাজ খারাপ থাকলে সহিংসতা ছাড়া কোন যৌনমিলনই হতে পারতো না। মি. বাগউইজা এখন তার যৌন সহিংসতার ��ন্য দু:খিত বোধ করেন। বিবিসির কাছে তিনি অনুতাপের সাথেই বর্ণনা করছিলেন বিশেষ করে একটি ঘটনার কথা। তখন তার স্ত্রী চার মাসের অন্ত:সত্বা। তিনি স্থানীয় মেয়েদের এক সমবায় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গোপনে কিছু টাকা জমাচ্ছেন, এ কথা জানার পর স্বামী দাবি করলেন, তাকে এক জোড়া জুতো কেনার টাকা দিতে হবে। স্ত্রী তা দিতে অস্বীকার করায় তার পেটে লাথি মারেন মি. বাগউইজা। "আমি ঘুরে দাঁড়িয়ে তার পেটে একটা লাথি মারলাম" - বলছিলেন তিনি, তাতে তার স্ত্রী মাটিতে পড়ে গেলেন, তার দেহ থেকে রক্ত বেরুতে লাগলো। তার প্রতিবেশীরা ছুটে এলেন, তাকে হাসপাতালে নেয়া হলো। জুলিয়েন বাগউইজা বলছেন, তার স্বামীর মেজাজ খারাপ থাকলে সহিংসতা ছাড়া কোন যৌনমিলনই হতে পারতো না। মি. বাগউইজা বললেন, "এটা ঠিক যে ওই টাকাটা তারই ছিল, কিন্তু আজকাল যেমন হয় যে মেয়েদের হাতে অর্থ থাকলে তারা নিজেদের ক্ষমতাবান মনে করে এবং তারা সেটা প্রদর্শন করে।" তার গ্রামের একজন নির্মাণকর্মী বিবিসিকে তার জীবনের কথা বলেন। তার ভাষায়, সহিংসতা ছিল তার স্ত্রীর সাথে যোগাযোগের একমাত্র উপায়। "আমি তাকে নিজের সম্পদ বলে মনে করতাম" - তিনি বলছেন, "আমি ভাবতাম আমি তার সাথে যা খুশি তাই করতে পারি। "যেমন ধরুন, আমি বাড়ি ফিরলাম - স্ত্রী আমাকে কিছু একটা জিজ্ঞেস করলো। অমনি আমি তাকে একটা ঘুষি মারলাম।" পৌরুষ সম্পর্কে আফ্রিকার পুরোনো ধ্যানধারণা অর্থ উপার্জনকারী মেয়েদের ব্যাপারে আফ্রিকান পুরুষদের মনে যে লুকোনো বিরাগ রয়েছে - অনেকের মতে সেটাই হলো আধুনিক আফ্রিকান পুরুষদের সংকটের মূল। বহুকাল ধরে এ মহাদেশে পুরুষরা বেড়ে উঠেছে এই ধারণা নিয়ে যে - পুরুষ মানেই হলো শক্তি, যার ক্ষমতা আছে তার নিজের পরিবারকে খাদ্য ও সুরক্ষা দেবার। মোইসেস বাগউইজা কিন্তু এখন পুরুষদের মধ্যে বেকারত্বের হার উচ্চ, অন্যদিকে নারীরা অনেকে চাকরি করছে, তাদের ক্ষমতায়ন হচ্ছে ক্রমশ। তাই চিরাচরিত সেই পুরুষের ভুমিকা পালন করা এখন কঠিন হয়ে উঠছে। মি. বাগউইজার মতে, অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন একজন নারীকে মনে করা হয় পৌরুষের প্রতি সরাসরি হুমকি হিসেবে। প্রতি ঘন্টায় ৪৮টি ধর্ষণ এক জরিপ অনুযায়ী কঙ্গোতে প্রতি ঘন্টায় গড়ে প্রায় ৪৮টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। দেশটির পূর্বাংশে দীর্ঘদিন ধরে যে সামরিক সংঘাত চলছে, তাতে প্রতিদ্বন্দ্বী মিলিশিয়া গ্রুপগুলো মেয়েদের গণধর্ষণ ও যৌনদাসী বা���ানোকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। ইলট আলফন্স কঙ্গো মেন'স নেটওয়ার্ক নামে এনজিওর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইলট আলফন্স বলছেন, "কিন্তু এটাকে শুধু যুদ্ধের পটভুমিতে দেখলে চলবে না। ব্যাপারটা আরো গভীর।" "আমরা মেয়েদেরকে আমাদের অধীনস্থ হিসেবে দেখার এই মানসিকতাটা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছি।" "পুরুষরা মনে করে তাদের যে কোন সময় যৌনমিলন করার অধিকার আছে। যে ক্ষমতা ও সামাজিক অবস্থান কঙ্গোলিজ পুরুষরা চায়, যৌন সহিংসতাটা তারই একটা বহিপ্রকাশ"- বলছিলেন তিনি। আলফন্স বলেন, তিনি নিজেও অতীতে একাধারে সহিংসতা করেছেন এবং তার শিকারও হয়েছেন। "আমরা বাড়িতে, স্কুলে দু জায়গাতেই বহু মার খেয়েছি। আর গ্রামে আমরা মারামারির আয়োজন করতাম।" "কখনো আমি আমার বান্ধবীকে পেটাতাম, কিন্তু দু:খ প্রকাশ করতে হতো তাকেই। আমার বোনকে লক্ষ্য করেও একদিন আমি একটা ছুরি নিক্ষেপ করেছিলাম।" মি. আলফন্স এবং তার সহকর্মীরা পুরুষদের সভার আয়োজন করেন তবে কঙ্গোতে এখন যৌন সহিংসতা ঠেকাতে একটা নতুন দৃষ্টিভঙ্গী নেয়া হচ্ছে। এতে পুরুষদের উৎসাহিত করা হচ্ছে যেন তারা তাদের পৌরুষ সম্পর্কে এতদিনের লালিত ধারণাগুলোকে নিজেরাই প্রশ্ন করতে শেখেন। মি. আলফন্স এবং তার সহকর্মীরা যৌন সহিংসতার মূল কারণগুলো মোকাবিলা করতে পুরুষদের সভার আয়োজন করেন এবং এতে মেয়েদেরকে নেতৃত্বমূলক ভুমিকায় রাখেন। প্রতি সপ্তাহে ২০ জনের মতো পুরুষ পিতৃত্ব, নারী-পুরুষ সমতা এবং পৌরুষের ইতিবাচক ধারণা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, নারীদের অনেকেই বলছেন এসব সভায় যোগ দেবার পর তাদের স্বামীদের মাঝে পরিবর্তন আসছে। পরিবর্তন এসেছে মি.বাগউইজার স্ত্রীর সাথে আচরণের মধ্যেও। সেটা হয়তো শতভাগ নয়, কিন্তু তার পরেও এটা একটা ইতিবাচক সূচনা বলে মনে করেন তিনি। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: ভাইব্রেটর কি যৌন আনন্দ উপভোগে বাধা হতে পারে? 'ভালোবাসা থাকলেও কখনো যৌন মিলন হয়নি' নারীর ওপর পর্নোগ্রাফির কী ধরনের প্রভাব পড়ে? "তার সাথে যৌনমিলন করাটা ছিল একটা যুদ্ধের মতো। সে যে কাপড়ই পরে থাকুক - আমি তা ছিঁড়ে ফেলে দিতাম।" +text: উপসাগরে দুটো বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে আমেরিকা সৌদি বাদশাহ সালমান ৩০শে মে মক্কায় এক জরুরী বৈঠকে বসার জন্য আরব লীগ এবং উপসাগরীয় দেশগুলোর জোট জিসিসি সদস্যদের আমন্ত্রণ পাঠিয়েছেন। সৌদি বার্তা সংস্থা এসপিএ সৌদি পররা��্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে জানাচ্ছে, "সংযুক্ত আরব আমিরাতে সমুদ্র সীমায় (সৌদি) বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা এবং সৌদি আরবের মধ্যে দুটো তেল ক্ষেত্রে হুতি সন্ত্রাসীদের হামলার" পরিপ্রেক্ষিতে এই জরুরী বৈঠক ডাকা হয়েছে। "এসব হামলা এই অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তা এবং বিশ্বে তেল সরবরাহের ওপর মারাত্মক হুমকি তৈরি করেছে।" গত সপ্তাহান্তে উপসাগরে দুটি সৌদি তেলের ট্যাংকারে হামলা চালানো হয়। এছাড়া, সৌদি দুটো তেলের স্থাপনায় ড্রোন হামলার পর অপরিশোধিত তেলের গুরুত্বপূর্ণ একটি পাইপলাইন বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এসপিএ আরো জানিয়েছে শনিবার রাতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে সৌদি যুবরাজ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহামেদ বিন সালমানের সাথে কথা বলেছেন। 'সৌদি আরব যুদ্ধ চায়না' সৌদি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আদিল আল জুবেইর রিয়াদে আজ (রোববার) এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "সৌদি আরব এ অঞ্চলে কোনো যুদ্ধ চায় না। যুদ্ধ যাতে না বাঁধে তার সব চেষ্টাই সৌদি আরব কমবে। তবে অন্য পক্ষ যুদ্ধ শুরু করলে, সৌদি আরব তার নিরাপত্তা এবং স্বার্থ রক্ষায় কড়া জবাব দেবে।" সৌদি মন্ত্রী বলেন, ইরান সমর্থিত মিলিশিয়ারা উদ্দেশ্যমুলকভাবে সৌদি স্বার্থে আঘাতের চেষ্টা করছে। হুমকির সুরে সৌদি মন্ত্রী বলেন, "সৌদি আরব আশা করে বিপদ এড়াতে ইরানের সরকার তাদের শুভবুদ্ধি প্রয়োগ করবে এবং তাদের অনুচরদের দায়িত্বহীন হঠকারী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখবে...না হলে এই অঞ্চলের যে পরিণতি হবে তার জন্য পরে অনুশোচনা করতে হবে।" শুধু সৌদি আরব নয়, উপসাগরীয় অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোও সম্ভাব্য ইরান-আমেরিকা যুদ্ধ নিয়ে গভীর শঙ্কায় পড়েছে। সৌদি বাদশাহ সালমান। মক্কায় আরব নেতাদের এক জরুরী বৈঠকে ডেকেছেন। সতর্ক বাহরাইন বাহরাইন তার নাগরিকদের ইরাক এবং ইরানে যাওয়ার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে এবং বলেছে যত দ্রুত সম্ভব ঐ দুটি দেশ ত্যাগ করতে। বাহরাইন উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশ। এছাড়া বাহরাইন প্রায়ই অভিযোগ করে যে ইরান তার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে। আঞ্চলিক উত্তেজনা যে বেড়েছে তার আরো কিছু লক্ষণ দেখা গেছে। বৃহৎ মার্কিন তেল কোম্পানি এক্সন-মোবিল দক্ষিণ ইরাকের একটি তেলক্ষেত্র থেকে তার সব বিদেশি কর্মচারীকে সরিয়ে নিয��েছে। আমেরিকা এবং ইরানের মধ্যে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক তেলের বাজারে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে তা আলোচনার জন্য জ্বালানি তেল উৎপাদকদের সমিতি ওপেক আজ রোববার) এক বৈঠকে বসছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভাদ যারিফ। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আশপাশের কিছু মানুষ তাকে যুদ্ধ শুরুর উস্কানি দিচ্ছে। ইরান একাধিকবার হুমকি দিয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের ওপর হামলা চালালে তারা তেল পরিবহনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেবে। তবে বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষক অ্যালান জনস্টন বলছেন, যুদ্ধের সম্ভাবনাকে ইরানিরা খাটো করে দেখাচ্ছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভাদ যারিফ শনিবার বলেন, ইরান কোনো যুদ্ধ চায় না। তবে তিনি একথাও বলার চেষ্টা করেন যে ইরানের সাথে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্র জয়ী হবে না এটাও আমেরিকানরা জানে। ওদিকে, সাবেক মার্কিন জেনারেল ডেভিড পেট্রেয়াসও বলছেন, কোন সর্বাত্মক যুদ্ধের সম্ভাবনা কম। তিনি বলেছেন, ইরান দখল করার ক্ষেত্রে যে বিশাল চ্যালেঞ্জ রয়েছে মার্কিন সামরিক দফতর পেন্টাগন সে কথা যুক্তরাষ্ট্রের নেতাদের নিশ্চয়ই জানিয়ে দেবে। আরো পড়ুন: ইরানকে ঘিরে মার্কিন যুদ্ধ প্রস্তুতি- উদ্দেশ্য কী কাতারে কেন নেমেছে চারটি মার্কিন বি-৫২ বিমান? যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ইরানের যুদ্ধ লেগে যাওয়ার সম্ভাবনায় পুরো মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। +text: ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া তার দল বিএনপির দাবি তিনি রাজনীতি এবং রাষ্ট্রে নীতিগত দিক থেকে অনেক পরিবর্তন এনেছিলেন। তবে, জামায়াতে ইসলামীসহ যারা ১৯৭১সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল,তাদের জিয়াউর রহমান পুনর্বাসন করেছিলেন। এমন সমালোচনাও রয়েছে। ছবিটি বিএনপির ওয়েবসাইট থেকে নেয়া বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন বাংলাদেশে এখন রাজনীতিতে যে মতানৈক্য চলছে, তার বীজ জিয়াউর রহমান বপন করেছিলেন বলে অনেকে অভিযোগ করেন। তার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি সমর্থিত পেশাজীবীদের একটি ফোরামের নেতা অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ বলছিলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী শেখ মুজিবের নেতৃত্বাধীন সরকারের শেষদিকে সংবিধানে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে একদলীয় শাসন বা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হ��়েছিল। এর বিরুদ্ধের জনগণের অবস্থান অনুভব করে জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন বলে তিনি মনে করেন। ১৯৮১ সালে জিয়ার মৃত্যুর পরে রাজনীতিতে আসেন খালেদা জিয়া। ২০০১ সালের নির্বাচনে জয়ের পর তার মন্ত্রীসভায় স্থান পেয়েছিলেন মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ- এ দুজনরেই পরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। তবে ১৯৭৭-৭৮ সালে বাংলা পত্রিকা দৈনিক বার্তার সম্পাদক ছিলেন কামাল লোহানী। তিনি মনে করেন, জিয়াউর রহমান নিজের রাজনীতি করার স্বার্থ থেকেই বহুদলীয় গণতন্ত্রের কথা বলে স্বাধীনতাবিরোধীদের সুযোগ দিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবীণ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন,আওয়ামী লীগের বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ করে জিয়াউর রহমান নিজের শক্তিকে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন বলে তাঁর ধারণা। বিএনপির মুখপত্র দৈনিক দিনকালের সাবেক সম্পাদক কাজী সিরাজ জিয়াউর রহমানের সময় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক ছিলেন। জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান । তাকেই দলটির ভবিষ্যৎ নেতা মনে করা হয়। তিনি বলেছেন,বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সে সময় প্রয়োজন ছিল। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধীদের পুনর্বাসনের সুযোগ তৈরি করে জাতীয় ঐক্যের শ্লোগান ভুল ছিল বলে তিনি মনে করেন। তবে বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, রাজনীতি করার সুযোগ নিয়ে স্বাধীনতার বিরোধীরা ফুলে ফেঁপে ওঠায় রাজনীতিতে মতানৈক্য বাড়ছে। অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন,স্বাধীনতা বিরোধীরা এখন ক্ষমতারও অংশীদার হচ্ছে। (এ বিষয়ে বিবিসি বাংলার বিশেষ প্রতিবেদন প্রচারিত হয়েছে আজ সকালের অধিবেশনে। এটি পুন:প্রচার হবে রাতে পরিক্রমায়) বাংলাদেশের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে এ সপ্তাহেই। +text: মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর বাংলাদেশে সাড়ে ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে তিনমাস পর এই সংখ্যা পুনরায় পর্যালোচনা করে বাড়ানো হবে। যেদিন থেকে যাওয়া শুরু হবে, তার পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে প্রক্রিয়াটি শেষ হবে বলে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন। সোমবার থেকে 'ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট' নামের ওই চুক্তিটির বিষয়ে মিয়ানমারে��� রাজধানী নেপিডোতে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের জয়েন্ট ওয়াকিং গ্রুপের প্রথম বৈঠকে আলোচনা শুরু হয়। মঙ্গলবার সকালে চুক্তিটি সই হয়। বাংলাদেশের পক্ষে মোঃ. শহিদুল হক এবং মিয়ানমারের পক্ষে মিন্ট থোয়ে স্বাক্ষর করেন। এর প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা বলছে, যেকোন প্রত্যাবাসন স্বেচ্ছামূলকভাবে হতে হবে এবং সেখানে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত করতে হবে। আরো পড়তে পারেন: তেরো সন্তানকে শিকল দিয়ে বেধে রেখেছিলো বাবা মা যৌন হেনস্থা নিয়ে মুখ খুললেন অলিম্পিয়ান সিমোন বেলিস বাংলাদেশে পালিয়ে আসা দু'জন রোহিঙ্গা নারী প্রতিদিন ৩০০ জন রোহিঙ্গা ফেরত যাবে চুক্তি সাক্ষরের পর মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মোঃ. শহিদুল হক বিবিসিকে বলছেন, ''চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন ৩০০জন রোহিঙ্গাকে ফেরত নেবে।'' তিনি জানান, বাংলাদেশ প্রতি সপ্তাহে ১৫ হাজার রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানোর দাবি করেছিল। কিন্তু মিয়ানমার সপ্তাহে ১৫০০ রোহিঙ্গা ফেরত নিতে রাজি হয়েছে। তিনমাস পরে পর্যালোচনা করে এই সংখ্যা বাড়ানো হবে। ''বাংলাদেশে যে রোহিঙ্গারা রয়েছেন, তাদের কিভাবে ফেরত আনা হবে, কোন রুট দিয়ে হবে, কোন কোন জায়গায় তাদের রাখা হবে, মিয়ানমারে যাবার পর তাদের কোথায় নেয়া হবে, নিরাপত্তা, বাড়িঘরের কি হবে, কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে এইসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।'' বলছেন মি. হক। চুক্তিটিতে ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা এবং রাখাইনে প্রত্যাবাসনের পর রোহিঙ্গাদের জীবন-জীবিকার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে যে বিপুল সংখ্যায় রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এসেছে, এত কম সংখ্যায় তাদের ফেরত পাঠানো হলে সেটি তো দীর্ঘ সময় নেবে। সেটা স্বীকার করে পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক বলছেন, ''এ ধরণের অবস্থায় এ ধরণের প্রত্যাবাসন এভাবেই হয়। কারণ আমরা সবকিছু চাইতে পারিনা। আমরা তাদের নিরাপত্তার কথাও বলবো, আবার আমরা চাইবো যে একসঙ্গে সবাইকে পাঠিয়ে দেবো, ওরা এখনি তা দিতে পারছে না। সবচেয়ে বড় বিষয়টি হলো, আমরা এখানে একটি ধারা রেখেছি, যেখানে বলা আছে যেদিন থেকে (রোহিঙ্গাদের) যাওয়া শুরু হবে, সেদিন থেকে দুই বছরের মধ্যে এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শেষ হবে।'' তিনি বলছেন, ''প্রথমে অল্প করে যাওয়া শুরু হবে, পরে এই সংখ্যা বাড়বে।'' কিন���তু কবে থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়া শুরু হবে, সেটি তিনি জানাতে পারেননি। তিনি বলেন, ''পদ্ধতি শুরু হয়েছে, এখন দ্রুততম সময়ে তাদের যাওয়া শুরু হবে।'' প্রত্যাবাসনে রোহিঙ্গাদের তালিকাভুক্তির জন্য একটি ফরমের রূপও চূড়ান্ত করা হয়েছে। যারা মিয়ানমারে ফেরত যাবেন, তাদের এই ফরমটি পূরণ করতে হবে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে গত ২৩শে নভেম্বর ২০১৭ তারিখে একটি সমঝোতা স্মারকে একমত হয় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। যাকে ''অ্যারেঞ্জমেন্ট অন রিটার্ন অফ ডিসপ্লেসড পারসনস ফ্রম রাখাইন স্টেট'' বা রাখাইন রাজ্যের বাস্তুচ্যুত মানুষদের ফিরিয়ে আনার সমঝোতা বলে বর্ণনা করা হচ্ছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযান থেকে নিজেদের বাঁচাতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে কিভাবে ফেরত পাঠানো হবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, দুই দেশের সম্মতিতে একটি ফরম পূরণ, যাচাই বাছাইয়ের পর প্রত্যাবাসনের জন্য রোহিঙ্গাদের বাছাই করা হবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি পরিবারকে একটি ইউনিট বলে বিবেচনা করা হবে। এই চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশে পাঁচটি ট্রানজিট ক্যাম্প স্থাপন করবে, যেখান দিয়ে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে। অন্যদিকে মিয়ানমার অভ্যর্থনা কেন্দ্র স্থাপন করবে, যেখানে ফেরত আসা রোহিঙ্গাদের প্রথমে রাখা হবে। হালা পাও খুঙে ফেরত আসা রোহিঙ্গাদের সাময়িক আশ্রয় দেবে মিয়ানমার। এই সময়ে তাদের বাড়িঘর পুনর্নির্মাণ করে দেয়া হবে। যে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা এখন দুই দেশের সীমান্তে জিরো পয়েন্টে রয়েছে, তাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টি মিয়ানমার সবার আগে বিবেচনা করবে বলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। দুইটি যৌথ কমিটি পুরো কার্যকলাপ নজরদারি করবে। এর একটি কমিটি যাচাই বাছাই কাজ তদারকি করবে, অন্যটি কমিটি প্রত্যাবাসনের বিষয়টি দেখভাল করবে। বিবিসি বাংলার আরো খবর: রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানো নিয়ে উদ্বিগ্ন ব্রিটিশ এমপিরা নির্বাচনী বছরে 'অরাজক পরিস্থিতি'র আশঙ্কা কেন? সিঙ্গাপুরের হ্রদে ভাসলো রোবট রাজহাঁস মেয়েদের কটাক্ষ ও গোপন ভিডিওর হুমকিতে ক্ষোভ বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সঙ্গে মাঠ পর্যায়ের একটি চুক্তি সই করা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিদিন ৩০০জ��� রোহিঙ্গাকে ফেরত নেবে মিয়ানমার। অর্থাৎ সপ্তাহে ১৫০০ রোহিঙ্গা ফেরত যাবেন। +text: করোনাভাইরাস নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছেই। (ঢাকার বিমানবন্দর থেকে তোলা ছবি) শনিবার এক টুইটার পোস্টে এই তথ্য জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়া অন্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে মিসর, লেবানন, সিরিয়া, ফিলিপিন্স, ভারত ও শ্রীলঙ্কা। এর আগে দেশটি দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ইটালি, ইরাক, সিঙ্গাপুর ও জাপানের সঙ্গে বিমান চলাচল স্থগিত করে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কুয়েতের বসবাসের অনুমতি থাকলেও, গত দুই সপ্তাহে এসব দেশে যারা ভ্রমণ করেছেন, তারা যেদেশের নাগরিক হোন না কেন, তারাও কুয়েতে প্রবেশ করতে পারবেন না। আরো পড়ুন: কুয়েতে যেতে করোনাভাইরাসমুক্ত সনদ লাগবে না টুইটারে কুয়েত সরকারের ঘোষণা তবে এসব দেশে ভ্রমণ করা কুয়েতের নাগরিকরা দেশে ফিরতে পারবেন। কিন্তু সেখানে তাদের কোয়ারেন্টিন প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হবে। এর আগে কুয়েতের সরকার একটি নির্দেশনা জারি করেছিল যে, বাংলাদেশসহ ১০টি দেশের নাগরিকদের কুয়েতে যেতে হলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন, এমন মেডিকেল সনদ লাগবে। তবে পরবর্তীতে সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত করে কুয়েতের সরকার। এদিকে বাংলাদেশের বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, কুয়েত সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে আপাতত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কুয়েতগামী পরবর্তী দুইটি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: রাজপরিবারের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সৌদি আরব 'দুবাইয়ের শেখ মোহাম্মদ অপহরণ এবং হুমকির জন্য দায়ী' বিবিসি বাংলার জরিপে শ্রেষ্ঠ বাঙালি: ১১- তিতুমীর ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলার সরকারি প্রস্তুতি কি যথেষ্ট? করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশসহ সাতটি দেশের সঙ্গে বিমান চলাচল এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছে কুয়েতের বেসামরিক বিমান চলাচল অধিদপ্তর। শনিবার থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। +text: সৌদি আরব থেকে এবছর ৯০০ বাংলাদেশী নারী শ্রমিক ফেরত এসেছেন। তাদের বেশিরভাগই সেখানে নানা ধরণের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। অভিবাসন নিয়ে কাজ করে এমন একটি বেসরকারি সংস্থা বলেছে, সেখানে ধর্ষণসহ নানা ধরনের নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে এবছর ৯০০ জনের মতো বাংলাদেশী নারী গৃহকর্মি দেশে ফেরত এসেছে। সংস্থাটি আরও বলেছে, সাম্প্রতিক সময়ে নারী শ��রমিকদের মৃতদেহ দেশে আসার সংখ্যাও বেড়েছে। এই বিষয়টিকেই বেশি উদ্বেগজনক বলে বলা হচ্ছে। ফেরত আসা নারী শ্রমিকরা ধর্ষণসহ নানাভাবে নির্যাতিত হওয়ার অভিযোগ করছেন। সরকারি কর্মকর্তারাও বলছেন, এসব অভিযোগের কিছুটা সত্যতা আছে। কিন্তু এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার কতটা কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে-এই প্রশ্ন অনেকে তুলছেন। এ বছর সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশী নারী গৃহকর্মির ৪৮ জনের মৃতদেহ দেশে আনা হয়। তাদের মধ্যে ২০ জনই সৌদি আরবে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে আত্মহত্যা করেছেন। বেসরকারি সংস্থা ব্রাক এর অভিভাসন কর্মসূচির কাছ থেকে এই পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। সংস্থাটি বলেছে, সৌদি আরবে গৃহকর্মির কাজ করতে গিয়ে নির্যাতনের কারণে বাংলাদেশী নারীদের মৃত্যুর ঘটনাগুলোর কোন বিচার হচ্ছে না। খুলনার খালিসপুর এলাকা থেকে সালমা বেগম বলছিলেন, সৌদি আরবে নির্যতনের কারণে তার ছোট বোনের মৃত্যু হয়েছে। কোন বিচার তারা চাইতেই পারেননি। মৃতদেহও পেয়েছেন ঘটনার অনেক পরে। "নির্যাতনে কারণে আমার ছোট বোন সৌদিতে একটা পরিবারের কাছ থেকে পালিয়ে থানায় গিয়েছিল। কিন্তু পরিবারটি থানা থেকে ফেরত নিয়ে আবার নির্যাতন চালিয়েছিল।তখন তার মৃত্যু হয় বলে আমরা জানতে পেরেছি।" "আমার বোনের মৃত্যু হয়েছে মার্চের ৪ তারিখে। কিন্তু আমরা মৃতদেহ পেয়েছি গত মাসের ২০ তারিখে। যদিও হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে বলে আমাদের সার্টিফিকেট দিয়েছে, কিন্তু মাথার পিছনটা ছিল ভাঙা এবং বিভৎস। নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরেও।" সৌদি আরবে একজন গৃহকর্মিকে নিয়ে যাওয়ার পর একটি পরিবার থেকে আরেকটি পরিবারের কাছে বিক্রি করে দেয়ার জন্য মক্তব নামের কিছু প্রতিষ্ঠানও আছে। এমন বিক্রির শিকার বাংলাদেশের প্রত্যন্ত একটি এলাকার ২৬ বছরের একজন নারী। স্বামী এবং এক শিশু সন্তান দেশে রেখে ভাগ্য বদলের জন্য সৌদি আরবে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্য বাড়ির দুই তলা হতে লাফ দিয়েছিলেন। মেরুদন্ডের হাড় ভেঙে পঙ্গু হলেও তিনি অন্তত জীবনটা নিয়ে দেশে ফিরতে পেরেছেন। "সৌদিতে যাওয়ার পর এক পরিবারে থাকলাম ৭ মাস। সেখানে প্রতিদিন মারধোর এবং নির্যাতন চলে। আর বেতন চাইলে নির্যাতন আরও বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে ঐ পরিবার আমাকে মক্তবের মাধ্যমে আরেকটা পরিবারের কাছে বিক্রি করে দেয়। সেখান থেকে পালানোর জন্য ঐ বাড়ির দুই তলার জানালা দিয়া বাইরে লাফ দিয়েছিলাম। তখন রাস্তার লোক আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।" "আমি হাসপাতালে দুই মাস ছিলাম। সেখান থেকে বাংলাদেশ দূতাবাসের সেভ হোমে চারমাস থাকার পর দেশে ফিরছি।" সৌদিতে যে বাড়িতে কাজ করতেন যাত্রাবাড়ীর তানিয়া সেখানে পিটিয়ে তার পা ভেঙে দেয়া হয়। আরো পড়তে পারেন? সৌদি আরব থেকে শ্রমিক ফেরত, চিন্তিত দূতাবাস 'বাঁচতে হলে লাফ দেয়া ছাড়া উপায় কি'? সৌদি আরব থেকে শ্রমিক ফেরত, চিন্তিত দূতাবাস নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেকজন নারী বলছিলেন, কয়েকদিন আগে ১৮ জন নারীর সাথে তিনি ফিরেছেন। ধর্ষণসহ নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়ে তারা পালিয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের সেন্টারে দুই মাস ছিলেন আরও দুইশ জন বাংলাদেশী নারীর সাথে। তাদের পর্যায়ক্রমে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্র মধ্যপ্রাচ্যে অভিবাসন শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করে, এই সংগঠনের সুমাইয়া ইসলাম বলছিলেন, সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশের নারী শ্রমিকদের ফেরত আসার মিছিল যে থামছে না, সে ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না। সৌদি আরবে দীর্ঘ সময় বাংলাদেশের শ্রমবাজার বন্ধ থাকার পর ২০১৫ সালে নারী গৃহকর্মি পাঠানোর শর্তে সেই বাজার খুলেছিল। সে সময়ের চুক্তির পর চার বছরে প্রায় তিন লাখ গৃহকর্মি সৌদি আরবে গেছে। এর মধ্যে আট হাজারের মতো ফেরত এসেছে বলে সরকারি তথ্যেই দেখা যাচ্ছে। ফেরত আসার সংখ্যাটা বেশি নয় বলে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা যুক্তি হিসেবে তুলে ধরছেন। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, সৌদিতে ২০ লাখের বেশি পুরুষ শ্রমিক আছে। তাদের বিষয়টি সরকার বিবেচনায় রাখছে। এছাড়া পুরুষ শ্রমিকদের যাওয়া অব্যাহত আছে। এই শ্রমবাজার আবার বন্ধ হোক সেটা বাংলাদেশ চায় না বলে তারা মনে করছেন। প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা সাবিহা বারী বলছিলেন, সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মি পাঠানো অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে সরকার কোন সমস্য দেখছে না। "আমরা যে দৃষ্টিকোণ থেকে পাঠাচ্ছি, সেই দৃষ্টিকোণ থেকে ফেরত আসার কথা না। কিন্তু তারা বিদ্রোহ করে ফেরত আসছে।" কিন্তু নির্যাতন সম্পর্কিত নানা অভিযোগের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এই কর্মকর্তা বলেছেন, "এটা কিছুটা ঠিক, তবে সম্পূর্ণ ঠিক সেটা আমি বলবো না।" তবে তিনি বলেছেন, এসব অভিযোগের ব্যাপারে বিভিন্ন সময় তারা সৌদি কর্তৃপক��ষের সাথে আলোচনা করেছেন। আরো পড়তে পারেন? দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ সাকিব আল হাসান: আইসিসি ইউরোপের উগ্র-দক্ষিণপন্থী এমপিরা কেন কাশ্মীরে? আল-বাগদাদির অন্তর্বাস চুরি করে ডিএনএ পরীক্ষা মাদ্রাসার ছদ্মবেশে নির্যাতন কেন্দ্র : ভয়ঙ্কর সব তথ্য সৌদি আরবে গৃহকর্মি হিসেবে যাওয়া বাংলাদেশের নারী শ্রমিকদের দেশে ফেরার প্রবণতা বাড়ছে। +text: খুলনার উপকুলবর্তী একটি গ্রামে বিপদসংকেতসূচক লাল পতাকা অথচ ১০ নম্বর হলো 'মহাবিপদ সংকেত', এর অর্থ হচ্ছে যে যেখানে যেভাবে আছেন, সে সেই অবস্থায় তৎক্ষণাৎ আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটুন অথবা নিরাপদ কোন পাকা ভবনের অভ্যন্তরে অবস্থান নিন। কিন্তু এমন একটি সতর্ক সংকেত সত্বেও উপকূলীয় এলাকার বহু মানুষেই নাকি পুলিশের সহায়তায় জোরপূর্বক আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হয়েছে। বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরীয় অঞ্চলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়কে সাইক্লোন বলা হলেও আটলান্টিক এলাকায় উদ্ভূত দুর্যোগগুলোকে হারিকেন বলা হয়। এই হারিকেনগুলোর সম্পর্কে যখন আগাম সতর্কতা দেয়ার প্রশ্ন আসে, তখন সেগুলোকে ভাগ করা হয় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে। অর্থাৎ এগুলো কতটা শক্তি নিয়ে আঘাত করবে স্থলে তার উপর নির্ভর করবে এর ক্যাটাগরি বা মাত্রা। আরো পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় বুলবুল সাতক্ষীরায় আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় পাইলিনের তান্ডব তবে 'শূন্য প্রাণহানি' নাঈমের লড়াইয়ের পর সিরিজ হারলো বাংলাদেশ যেমন ২০০৫ সালে আমেরিকায় আছড়ে পড়া সামুদ্রিক ঝড় 'ক্যাটরিনা' ছিলো একটি ৫ মাত্রার সুপার হারিকেন। এটির ধ্বংসযজ্ঞ ছিলো ব্যাপক। আমেরিকার মতো দেশটিতে হারিকেনটি ১২শ মানুষের প্রাণহানীর কারণ হয়েছিলো। কিন্তু বাংলাদেশে দুর্যোগের আগে যে সতর্কসংকেত জারি করা হয়, তার প্রায় সবগুলোই হয় বন্দরকেন্দ্রিক। এতে বাতাসের গতিবেগ উল্লেখ থাকে। এই সতর্কসংকেত দিয়ে ঘূর্ণিঝড় বা সাইক্লোনগুলোর শক্তিমত্তা সম্পর্কে খুব স্পষ্ট কোন ধারণা পাওয়া যায় না। যেমনটি ধারণা পাওয়া যায় হারিকেনের ক্যাটাগরি দিয়ে। বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড়ের সময় পর্যায়ক্রমে যে সংকেতগুলো দেয়া হয় সেগুলোতে আসলে কী বলা হয়? দূরবর্তী সংকেত ১: সমুদ্রের দূরবর্তী স্থানে ঝড়ের মতো আবহাওয়া তৈরি হয়েছে। বাতাসের গতিবেগ অন্তত ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার। বুলবুল আঘাত হানার পর দক্ষিণাঞ্চলীয় অনেক জেলায় ভারি বৃষ্টিপাত হয় দূরবর্তী সতর্��সংকেত ২: গভীর সমুদ্রে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। গতিবেগ ঘন্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার। স্থানীয় সতর্কসংকেত ৩: বন্দরে ঝড় আছড়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। বাতাসের গতিবেগ হতে পারে ঘন্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার। স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত ৪: বন্দরে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে পারে। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কিলোমিটার। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়ার মতো তেমন বিপজ্জনক সময় এখনো আসেনি। বিপদসংকেত ৫: বন্দর ছোট বা মাঝারী তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়তে যাচ্ছে। ঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। বিপদসংকেত ৬: একই ঝড় বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। বিপদসংকেত ৭: ঝড়টি বন্দরের ওপর বা কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। মহাবিপদ সংকেত ৮: বন্দর প্রচন্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার বেশি হতে পারে। প্রচন্ড ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে। মহাবিপদ সংকেত ৯: ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে। মহাবিপদ সংকেত ১০: বন্দর প্রচন্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়েতে যাচ্ছে। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার বেশি হতে পারে। প্রচন্ড ঝড়টি বন্দরের উপর বা নিকট দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত ১১: আবহাওয়ার বিপদ সংকেত প্রদানকারী কেন্দ্রের সাথে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এবং স্থানীয় কর্মকর্তারা আবহাওয়া অত্যন্ত দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করেন। উপরে উল্লেখিত সংকেতগুলো দিয়ে সাগরের অবস্থা কেমন তা বোঝা গেলেও ঝড়টি স্থলভাগের জন্য কতটা ক্ষয়ক্ষতি ডেকে আনতে পারে সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বোঝা সম্ভব হয় না। আর তাই সতর্ক সংকেতগুলো বদলে দেয়ার সময় এসেছে কিনা সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান অবশ্য বলেন, ঝড়টি মূলত দক্ষিণ দিক অর্থাৎ সাগরের দিক থেকে আসে। তাই যে বন্দরের উপর দিয়ে যাবে সে বন্দরেই বেশি ক্ষতির মুখে থাকবে। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়টা কতটা শক্তিশালী তা নির্ভর করে এর বাতাসের গতিবেগ কেমন তার উপর। ঘূর্ণিঝড় বুলবুল আঘাত হানার আগে উপকূলবর্তী এলাকা থেকে বহু মানুষকে ন���রাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয় বাতাসের গতিবেগ যখন ৬২-৮৮ কিলোমিটার থাকে তখন এটা স্বল্পমাত্রার সাইক্লোন। ৮৯ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিবেগের বাতাস থাকলে তখন এটা হয় অতি প্রবল মাত্রার সাইক্লোন। তবে আরেকটি সাইক্লোন রয়েছে যাকে সুপার সাইক্লোন বলা হয়। এই সাইক্লোনে বাতাসের গতিবেগ থাকে ঘণ্টায় দুইশ কিলোমিটারের বেশি থাকে। তবে আমাদের দেশে অতি প্রবল সাইক্লোন এবং সুপার সাইক্লোনের জন্য একই ধরণের সতর্কসংকেত দেয়া হয়। আর সেটি হলো ১০ নম্বর মহা বিপদ সংকেত। এজন্য অনেক সময় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত থাকলেও মানুষ আসলে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চায় না। আর তাই সতর্ক সংকেতের বিষয়টিতে পরিবর্তন আনা জরুরী। "এজন্যই এই সংকেত ব্যবস্থায় আরেকটু শ্রেণীবিভাগ করা উচিত", বলেন তিনি। তিনি বলেন, যে ঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ১০০-১২০ কিলোমিটার তার ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা আর ২০০-২৫০ কিলোমিটার গতিবেগের সুপার সাইক্লোনের ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা এক হবে না। তবে তিনি বলেন যে, ৯ নম্বর সংকেতের পরই যেহেতু সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত দেয়া হয় এবং এ সংকেত অনুযায়ী, সবার আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া বাধ্যতামূলক হওয়ায় আলাদা সংকেতের কথা আর বলা হয় না। মি. রহমান বলেন, "বঙ্গোপসাগর বা আরব সাগরীয় অঞ্চলে দুর্যোগগুলোকে ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করার রীতি নেই। সেটা কেন নেই তা অবশ্য আমার জানা নাই"। তবে তার এই কথায় দ্বিমত পোষণ করেছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত পরিচালক শাহ আলম। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সবশেষ অবস্থান। বাংলাদেশ আবহাওয়া দপ্তরের উপগ্রহ চিত্র। তিনি বলেন, বাংলাদেশে পূর্বাভাস হিসেবে যে সংকেতগুলো ব্যবহার করা হয় সেখানে বাতাসের গতিবেগও উল্লেখ করা হয়। সে কারণে বোঝা যায় যে আসলে ঘূর্ণিঝড়টি কতটা শক্তিশালী। তার মতে, স্থানীয় বাসিন্দারা বোঝেন যে, ৮০ কিলোমিটার বা ১০০ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ হলে কি ধরণের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তারা সে হিসেবেই ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন। সাবেক এই আবহাওয়া কর্মকর্তা বলেন, "উপকূলীয় জনগণ জানেন যে ১০০ কিলোমিটার বাতাস হলে তাদের ঘর উড়ে যাবে না। তবে সিভিয়ার ওয়েদার হলে তারা আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যায়"। সতর্ক সংকেত পরিবর্তনের কোন দরকার নেই বলেও মনে করেন মি. আলম। তিনি বলেন, এরই মধ্যে মানুষ আসলে বোঝে যে কোন সংকেত দিয়ে কি বোঝায়। বাংলাদেশে সবশেষ ঘূর্ণিঝড় 'বুলবুল' ���ঘাত হানার আগে ১০ নম্বর সতর্কতা সংকেত জারি করা সত্বেও বহু মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনাগ্রহী ছিল। +text: আসিয়া বিবি: অবশেষে নির্দোষ প্রমানিত হলেন। এই মামলাকে ঘিরে পাকিস্তান কার্যত বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। ইসলামের নবী মোহাম্মদকে অবমাননার অভিযোগে আসিয়া বিবিকে ২০১০ সালে ফাঁসির দন্ড দেয়া হয়। প্রতিবেশিদের সঙ্গে ঝগড়ার সময় তিনি নবীর অবমাননা করেন বলে অভিযোগ করা হয়। আসিয়া বিবি সব সময় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এসেছেন। কিন্তু গত আট বছর ধরে তাকে কারাগারে নিঃসঙ্গ অবস্থায় রাখা হয়েছে। পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের আজকের রায়কে যুগান্তকারী বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের কট্টরপন্থীরা এরই মধ্যে তীব্র বিক্ষোভ শুরু করেছে। পাকিস্তানের কট্টরপন্থী ইসলামী গোষ্ঠীগুলো ব্লাসফেমি বা ধর্ম অবমাননার অভিযোগের জন্য কঠোর সাজার পক্ষে। রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্য পাকিস্তানের করাচী, লাহোর এবং পেশাওয়ার শহরে কট্টরপন্থীরা জড়ো হচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি সাকিব নিসার্ম আসিয়া বিবির মামলার রায় ঘোষণা করে তাকে মুক্তির নির্দেশ দেন। আসিয়া বিবি লাহোরের কাছে শেখুপুরা কারাগারে বন্দী আছেন। বিচারকরা তাদের রায়ে বলেন, "বাদী পক্ষ তাদের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানে একেবারেই ব্যর্থ হয়েছেন"। ব্লাসফেমির জন্য ফাঁসির দাবিতে কট্টরপন্থীদের বিক্ষোভ তারা আরও বলেছেন, ঠুনকো প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে এই মামলা করা হয়েছে। এতে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। আর আসিয়া বিবিকে যখন উন্মত্ত জনতা হত্যার হুমকি দিচ্ছিল, সেই অবস্থায় তার কাছ থেকে কথিত ধর্ম অবমাননার স্বীকৃতি আদায় করা হয়। বিচারকরা তাদের রায়টিতে কোরান এবং ইসলামের ইতিহাস থেকে প্রচুর উদ্ধৃতি দিয়েছেন। রায়টি শেষ হয়েছে নবী মোহাম্মদের একটি হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে, যাতে অমুসলিমদের সঙ্গে ভালো ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। আদালতে যখন রায় ঘোষণা করা হয়, তখন আসিয়া বিবি সেখানে ছিলেন না। কারাগারে যখন তার কাছে এই খবর এসে পৌঁছায়, তিনি তা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। টেলিফোনে তিনি এএফপি বার্তা সংস্থাকে বলেন, "যা শুনছি তা আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। এখন কি আমি বাইরে যেতে পারবো? ওরা কি আমাকে বাইরে যেতে দেবে?" আরও পড়ুন: পাকিস্তানে বোরকাধারী তিন মহিলা�� হত্যা মিশন পাকিস্তানে সহিংসতা ঠেকাতে সেনাবাহিনী তলব পাকিস্তানে সাবেক এক পপশিল্পীর বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি মামলা আসিয়া বিবির বিরুদ্ধে অভিযোগ কী? আসিয়া বিবির পুরো নাম আসিয়া নরিন। ২০০৯ সালে তিনি নিজের গ্রামের প্রতিবেশী কয়েকজন মহিলার সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়েছিলেন। সেখান থেকে এই মামলার শুরু। আসিয়া এবং তার প্রতিবেশিরা গাছ থেকে ফল পাড়ছিলেন। তখন এক বালতি পানি নিয়ে ঝগড়া শুরু হয়। আসিয়া একটি কাপে করে ঐ বালতির পানি খেয়েছিলেন। তখন অন্য মহিলারা বলেন, যেহেতু আসিয়া অমুসলিম, তার স্পর্শ করা ঐ পানি তারা খেতে পারবেন না, কারণ ঐ পানি এখন নোংরা হয়ে গেছে। মামলায় বাদীপক্ষ অভিযোগ করেছিল, এ নিয়ে ঝগড়া শুরু হওয়ার পর গ্রামের মহিলারা আসিয়াকে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান হতে বলেন। কিন্তু তখন আসিয়া নবী মুহাম্মদ সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। সালমান তাসির: আসিয়ার পক্ষ নেয়ায় হত্যা করা হয় তাকে আসিয়ার বিরুদ্ধে যারা ধর্ম অবমাননার অভিযোগ করেছিল, তারা পরে আসিয়াকে তার বাড়িতে গিয়ে মারধোর করে। তারা দাবি করছে, এই মারধোরের সময় আসিয়া নাকি ইসলাম অবমাননার দোষ স্বীকার করেন। এরপর আসিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ব্লাসফেমি নিয়ে কেন এত বিভক্ত পাকিস্তান আসিয়া বিবির মামলা নিয়ে পাকিস্তান এতটাই বিভক্ত হয়ে পড়ে যে সেখানে এই বিতর্কে পাঞ্জাব রাজ্যের গভর্ণর সালমান তাসিরকেও প্রাণ দিতে হয়। তিনি ব্লাসফেমি আইনের বিরুদ্ধে কথা বলায় তাকে গুলি করে হত্যা করে তারই দেহরক্ষী। শুধু তাই নয়, হত্যাকারী দেহরক্ষী মুমতাজ কাদিরকে যদিও এই হত্যার দায়ে ফাঁসি দেয়া হয়, তাকে পাকিস্তানের কট্টরপন্থী ইসলামী দলগুলো তাদের নায়কে পরিণত করে। ইসলামাবাদের উপকন্ঠে মুমতাজ কাদরির সমাধি সৌধ তাদের জন্য রীতিমত তীর্থস্থানে পরিণত হয়। এমনকি মুমতাজ কাদরির সমর্থকরা একটি রাজনৈতিক দল পর্যন্ত গঠন করে। এরা ব্লাসফেমি আইন রদ করার বিপক্ষে । গত নির্বাচনে এই দল প্রায় বিশ লাখ ভোট পেয়েছে। ইসলাম হচ্ছে পাকিস্তানের রাষ্ট্রধর্ম। সেখানে ব্লাসফেমি আইনে ইসলামের অবমাননার সর্বোচ্চ সাজা হচ্ছে মৃত্যুদন্ড। কিন্তু এই আইন অনেক ক্ষেত্রেই ব্যক্তিগত শত্রুতা চরিতার্থ করার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন অনেকে। তারা এই আইন বাতিলের পক্ষে। আসিয়া বিবির কন্যা এবং স্বামী। পাকিস্তানে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত তারা। পাকিস্তানে এই আইনে প্রথম মৃত্যুদন্ডের সাজা পাওয়া মহিলা হচ্ছেন আসিয়া। পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইনে সবচেয়ে বেশি সাজা পেয়েছেন সংখ্যালঘু আহমদীয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। বহু খ্রীস্টানও এই আইনে সাজা ভোগ করেছেন। যদিও পাকিস্তানের জনসংখ্যার মাত্র এক দশমিক ছয় শতাংশ হচ্ছেন খ্রীস্টান। ব্লাসফেমি আইনে পাকিস্তানে আজ পর্যন্ত কারও ফাঁসি হয়নি। কিন্তু ব্লাসফেমির অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে, তাদের অনেককে খুন করা হয়েছে। আসিয়া বিবির জন্ম ১৯৭১ সালে। তিনি চার সন্তানের মা। তাকে ব্লাসফেমি আইনে মৃত্যুদন্ড দেয়ার ঘটনার আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দিত হয়। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পর এখন আসিয়া বিবিকে মুক্তি দেয়া হলে তার বিরুদ্ধে পাকিস্তানে সহিংস বিক্ষোভের আশংকা করা হচ্ছে। তার পরিবারও নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত। বেশ কয়েকটি দেশ আসিয়া বিবিকে আশ্রয় দিতে চেয়েছে। মুক্তির পর আসিয়া বিবি এবং তার পরিবার দেশত্যাগ করতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। পাকিস্তানের আসিয়া বিবি নামে যে খ্রীস্টান মহিলাকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ফাঁসির দন্ড দেয়া হয়েছিল, পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট তা বাতিল করে দিয়েছে। +text: শনিবার দামেস্ক গেটের কাছে ইসরায়েলি পুলিশ স্টান গ্রেনেড ছোড়ে আশঙ্কা করা হচ্ছে সোমবার ইহুদি জাতীয়তাবাদীদের মিছিলকে কেন্দ্র করে আরো সহিংসতা হতে পারে। বার্ষিক জেরুজালেম দিবস উপলক্ষে পতাকা মিছিলের আয়োজন করেছে ইহুদি জাতীয়তাবাদীরা। এই দিনে সাধারণত তরুণ ইহুদিরা মুসলিম এলাকাগুলোতে মিছিল নিয়ে প্রদক্ষিণ করে। ১৯৬৭ সালে পূর্ব জেরুজালেম দখলের স্মরণে এই দিবস পালন করা হয়। অনেক ফিলিস্তিনিরা একে উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড হিসেবে দেখে। ইসরায়েলের সাবেক উচ্চপদস্থ প্রতিরক্ষা বিষয়ক একজন কর্মকর্তা এই মিছিল বাতিল করার অথবা অন্য পথ দিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জারাহ এলাকা থেকে ফিলিস্তিনি পরিবারকে উচ্ছেদ করার হুমকি দেয়ার পর শহরটিতে উত্তেজনা বিরাজ করছে। চিকিৎসক এবং পুলিশের বরাত দিয়ে জানা যাচ্ছে গত তিন দিনের সহিংসতায় কয়েকশ ফিলিস্তিনি এবং ২০জনের বেশি ইসরায়েলি পুলিশ আহত হয়েছে। এদিকে আজ সোমবার ফিলিস্তিনি পরিবারগুলো অনেক বছর আগে যে মামলা করেছি��� সেটা আদালতে শুনানি হওয়ার কথা আছে। তৃতীয় দিনের সংঘর্ষে যা ঘটেছে শেখ জারাহতে রবিবার রাতে ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলি পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়ে, এর জবাবে পুলিশ কর্মকর্তারাও স্টান গ্রেনেড এবং জল কামান ব্যবহার করেছে। ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর উপর ইট পাটকেল ছোড়ে তবে পুরনো শহরের দামেস্ক গেটের কাছে আগুন জ্বালিয়ে দেয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। ফিলিস্তিনের চিকিৎসকরা বলছেন বেশ কিছু বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলের শহর হাইফা এবং রামাল্লাতে ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলিদের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু জেরুজালেমের পুলিশের কার্যকলাপকে সর্মথন করে বলেছেন তার সরকার শান্তিপূর্ন অবস্থাকে নষ্ট করার জন্য কোন প্রকার কট্টরপন্থী উপাদানকে পাত্তা দেবে না। পূর্ব জেরুজালেমে জেরুজালেমের নিরাপত্তা বাহিনীর পদক্ষেপের নিন্দা করেছেন প্রতিবেশি জর্ডান। মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি আলোচনায় যেসব দেশ ভূমিকা রাখে, সেই যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া এবং জাতিসংঘ এই সহিংসতার ব্যাপারে 'গভীর উদ্বেগ' জানিয়েছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ আজ আরো পরের দিকে এই ইস্যু নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। আরো পড়ুন: আরবদের হটিয়ে যেভাবে ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল জেরুজালেমে কেন প্রার্থনার স্থান নিয়ে দ্বন্দ্ব? জেরুজালেম রাজধানীর স্বীকৃতি পেলে বিপদ কোথায়? আরব-ইসরায়েল সংঘাত শুরু যে ৬৭ শব্দের অনুচ্ছেদে সহিংসতা উসকে দিল যে বিষয়গুলো শনিবারের সহিংসতার শুরু হয় জেরুজালেমের দামেস্ক গেটে যখন ইসলাম ধর্মের পবিত্র রাত লাইলাতুল আল-কদর উপলক্ষে হাজার হাজার মুসলমান আল-আকসা মসজিদে নামাজ আদায় করেন। এর আগে শনিবার মসজিদ অভিমুখে নামাজীদের নিয়ে যাওয়া অনেক বাস আটকে দেয় ইসরায়েলি পুলিশ। শুক্রবারের সহিংসতার কারণে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তারও করা হয়। ''তারা আমাদের নামাজ পড়তে দিতে চায় না। সেখানে প্রতিদিনই লড়াই করতে হচ্ছে, প্রতিদিনই সহিংসতা হচ্ছে। প্রতিদিনই সেখানে সমস্যার তৈরি হচ্ছে,'' রয়টার্স নিউজ এজেন্সিকে বলেছেন সাতাশ বছরের মাহমুদ আল-মারবুয়া। সহিংসতার পেছনের কারণ ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের পর থেকেই পূর্ব জেরুজালেম দখল করে রেখেছে ইসরায়েল। পুরো শহরকে তারা নিজেদের রাজধানী বলে মনে করলেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ দেশ তাতে স্বীকৃতি দেয়নি। সহিংসতায় আহত একজন নারীকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ফিলিস্তিনিরা দাবি করে, পূর্ব জেরুজালেম হবে তাদের স্বাধীন দেশের রাজধানী। ওই এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তেজনা চলছে, কারণ ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের জন্য পূর্ব জেরুজালেমের বাড়িঘর থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করার সম্ভাবনায় প্রতিদিনই কলহ তৈরি হচ্ছে। জাতিসংঘ ইসরায়েলের প্রতি আহবান জানিয়েছে যেন যেকোনো ধরনের উচ্ছেদের কর্মকাণ্ড বন্ধ করা হয় এবং ''বিক্ষোভকারীদের প্রতি যেন সর্বোচ্চ সহনশীলতা দেখানো হয়''। জোর করে বাস্তুচ্যুত করার যেকোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহবান জানিয়েছে আরব লীগ। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা মামলার বিষয়ে সোমবার একটি শুনানি করতে যাচ্ছে ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: কোভিডে বিপর্যস্ত ভারতে দিশেহারা বাংলাদেশি রোগীরা যেভাবে সুয়েজ খাল দখলের চেষ্টা করেছিল ব্রিটেন ও ফ্রান্স ভয়ঙ্কর 'ব্ল্যাক ফাঙ্গাস' এর আক্রমণে অন্ধ হয়ে যাচ্ছে কোভিড রোগীরা জেরুজালেমে তৃতীয় রাতের মত ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষ হয়েছে। +text: প্রায়ই শোনা যায় আন্তর্জাতিক হ্যাকাররা বিভিন্ন কম্পিউটার হ্যাক করে মুক্তিপণ দাবি করছে আর সে মুক্তিপণ পরিশোধ করতে বলা হয় বিটকয়েনে। এক্ষেত্রে বিটকয়েনের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন প্রকাশের মাধ্যমে বিষয়টি সাধারণ মানুষের নজরে আনার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিটকয়েন এক ধরনের ক্রিপ্টো-কারেন্সি বা ভার্চুয়াল মুদ্রা। মুদ্রাটির দাম ওঠা-নামার মধ্যেই রয়েছে। যদিও বাস্তবে এর অস্তিত্ব নেই। ইন্টারনেট সিস্টেমের মাধ্যমে প্রোগ্রামিং করা আছে যেটি চাইলে কেনা যায়। ইন্টারনেট সিস্টেমকে ব্যবহার করে কিছু ব্যক্তি এটি গড়ে তুলেছে। অর্থনীতিবিদদের ভাষায় এটা একধরনের জুয়াখেলার মতো, যেটার ভিত্তিতে হয়তো টাকা খাটিয়ে লাভজনক কিছু করা যেতে পারে। সেজন্য অনেক মানুষ সেদিকে আকৃষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ভার্চুয়াল মুদ্রা কোন দেশের বৈধ কর্তৃপক্ষ ইস্যু করে না বিধায় এর বিপরীতে আর্থিক দাবির কোন স্বীকৃতিও নেই। ভার্চুয়াল মুদ্রায় লেনদেনের দ্বারা মানি লন্ডারিং এবং সন্ত্রাসে অর্থায়ন সম্পর্কিত আইনের লঙ্ঘন হতে পারে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সতর্ক করে দিয়েছে। এ ধরনের লেনদেনের মাধ্যমে আর্থিক এবং আইনগত ঝুঁকি রয়েছে বলে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক উল্লেখ করেছে। মুদ্রা দিয়ে যেভাবে পণ্য বা সেবা কেনা যায়, বিটকয়েন দিয়ে কি সেসব কেনা যায়? বাংলাদেশের একজন অর্থনীতিবিদ আহসান মনসুর কয়েকদিন আগে বিবিসি বাংলাকে বলেন, "কেনা যাবে। কোনও ব্যক্তির কাছে এধরনের পণ্য বা সেবা প্রদানের ব্যবস্থা থাকলে সে চাইলে বিটকয়েনর বিনিময়ে সেটি বিক্রি করতে পারবে। অনলাইনে যেভাবে আমরা ই-পেমেন্ট সিস্টেমে কেনাকাটা করছি সেভাবে বিটকয়েনের মাধ্যমে অনলাইনে কেনা-কাটা করা সম্ভব"। সম্প্রতি দাম বেড়ে যাবার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "কয়েকদিন আগে এর দাম ছিল এক হাজার ডলার। তারও আগে ছিল একশো ডলার। একবছরের মধ্যে একশো থেকে এক হাজার ডলারে দাম উঠে যায়। এরপর কয়েক মাসের মধ্যে এর দাম উঠে গেছে ১৯ হাজার ডলারে। এটা র‍্যাশনাল বিহেভিয়ার নয়"। তিনি জানান, এখন এখানে অনেকেই এর পেছনে বিনিয়োগ করছে আরও বেশি টাকার জন্য। এরকম ক্ষেত্রে হঠাৎ করে এইসব লোকেরা বাজার থেকে সরে গেলে বিপদে পড়বেন অনেকেই। আরো পড়ুন বিটকয়েনে লেনদেন কতটা নিরাপদ? মাত্র কয়েক দিনে বিটকয়েনের বড় রকমের পতন অনলাইনে ভার্চুয়াল মুদ্রায় লেনদেন করার ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি করেছে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক। +text: এক দশক পর চালানো আদম শুমারিতে দেখা গেছে চীনের ইতিহাসে জন্মহার সবচেয়ে ধীর গতিতে হয়েছে বহু দশক ধরে কঠোরভাবে 'এক সন্তান নীতি' অনুসরণের পর ২০১৬ সালে চীন তা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়ে জানায় সব দম্পতি দুটি সন্তান নিতে পারবেন। কিন্তু এরপরেও চীনে জন্মহার স্থায়ীভাবে বাড়েনি। শহরগুলোতে সন্তান বড় করার ক্রমবর্ধমান খরচ বহু চীনা দম্পতির জন্য একটা বড় অন্তরায় হিসাবে কাজ করেছে। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে পলিট ব্যুরোর বৈঠকে সর্বসাম্প্রতিক এই পদক্ষেপ অনুমোদন করেছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। শিনহুয়া বলেছে নতুন এই পদক্ষেপ কার্যকর করতে দেশটির জনসংখ্যা কাঠামো উন্নয়নে সহায়তামূলক পদক্ষেপও নেয়া হবে। জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া কী? "জন্মসংখ্যা বাড়ানোর চাবিকাঠি যদি জন্ম ���িয়ন্ত্রণ নীতি শিথিল করার সাথে সম্পর্কিত হতো, তাহলে বর্তমান দুই-সন্তান নীতি চালু করার পর সেটা কাজ করার কথা ছিল," রয়টার্স সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন হাও ঝৌ, কমার্সব্যাংকের একজন অর্থনীতিবিদ। "তিনটি সন্তান কে চায়? তরুণ দম্পতিরা বেশি হলেও দুটির বেশি সন্তানে আগ্রহী নয়। মূল বিষয়টা হল জীবনযাপনের খরচ খুবই বেশি এবং বেঁচে থাকার জন্য চাপও বিশাল।" আরও পড়ুন: চীনে গত বছর জন্মেছে এক কোটি ২০ লাখ শিশু। ২০১৬ সালে এই সংখ্যা ছিল এক কোটি ৮০ লাখ আরেকজন শীর্ষ অর্থনীতিবিদ ঝিওয়েই ঝাং রয়টার্সকে বলেছেন যে শুরুতে "এর কিছু ইতিবাচক প্রভাব হতে পারে, কিন্তু সেটা বড় কিছু হবে না"। "সন্তান মানুষ করার খরচ- বিশেষ করে শিক্ষা এবং আবাসনের খরচ- যদি সরকার সফলভাবে কমাতে পারে, তাহলে দীর্ঘ মেয়াদে এর ফল পড়তে পারে," তিনি বলেন। সামাজিক মাধ্যমে নতুন এই পদক্ষেপ নিয়ে চীনাদের মধ্যে তেমন উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যায়নি। "তিনটি সন্তান! আমি তো একটা সন্তানও চাই না," ব্লগিং সাইট ওয়েইবোতে লিখেছেন একজন সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারী। "আপনি কি জানেন তরুণ প্রজন্মের বেশির ভাগেরই নিজেদের দেখাশোনা করতে নাভিশ্বাস উঠছে?" বিবিসিকে বলেছেন বেইজিংয়ের বাসিন্দা এক তরুণী। তার কথায় "আমি নিজের কথা ভাবতে চাই, সন্তান নেয়া ও তাকে বড় করার অনবরত দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়তে চাই না।" আদমশুমারি কী বলছে? এ মাসের গোড়ায় আদমশুমারির তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, যাতে দেখা যাচ্ছে চীনে গত বছর জন্মেছে এক কোটি ২০ লাখ শিশু। ২০১৬ সালে এই সংখ্যা ছিল এক কোটি ৮০ লাখ- অর্থাৎ জন্মহার উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে। ১৯৬০এর দশকের পর এটা শিশুজন্মের সর্বনিম্ন হার। এইআদমশুমারির জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে ২০২০-র শেষ দিকে। ৭০ লাখ তথ্য সংগ্রহকারী চীনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছে। কাজেই যে পরিমাণ মানুষ জরিপের আওতায় এসেছে তা বিশাল এবং চীনের জনসংখ্যার এই হিসাব খুবই ব্যাপক মাত্রায় সংগৃহীত তথ্যের ফসল। ভবিষ্যত পরিকল্পনার জন্যও এই হিসাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছিল যে শুমারির ফল প্রকাশ হওয়ার পর চীন পরিবার নিয়ন্ত্রণ নীতি শিথিল করবে। চীনে নতুন ঘোষিত তিন সন্তান নীতিতে রাষ্ট্রীয় মাধ্যমে খুবই উদ্দীপনার সাথে তুরে ধরা হচ্ছে, কিন্তু বহু চীনাই বেশি সন্তান নিতে আগ্রহী নন রাষ্ট্রীয় মিডিয়া��় হৈচৈ বনাম জনমত চীনের শীর্ষস্থানীয় মিডিয়াগুলো "তিন সন্তান নীতি" নিয়ে তুমুল হৈচৈ ফেলে দিয়েছে বলে জানাচ্ছেন চীনা মিডিয়া বিশ্লেষক কেরি অ্যালেন। সংবাদপত্র পিপলস্ ডেইলি, রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল সিসিটিভি এবং সংবাদ সংস্থা শিনহুয়া তাদের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে আজ বাচ্চাদের হাসিমুখের নানা কার্টুন ছবি পোস্ট করছে এবং খুব সাড়ম্বরে নতুন নীতির "আগমন" ঘোষণা করছে। জনপ্রিয় সামাজিক নেটওয়ার্ক সিনা ওয়েইবোতে শীর্ষ আলোচনার বিষয় এই নতুন নীতি। তারা পোস্টিং দিয়ে বলছে নতুন নীতি নিয়ে হাজার হাজার মানুষ মতামত দিচ্ছে, মন্তব্য করছে লাখ লাখ মানুষ। তবে সব জনমত কিন্তু উদ্দীপনার নয়। শিনহুয়ার ইতিবাচক পোস্ট নিয়ে মন্তব্য করেছেন ১ লাখ ৮০ হাজারের বেশি মানুষ এবং যারা এই নীতির সমালোচনা করে মন্তব্য করেছেন তাদের পোস্টেই লাইক পড়েছে বেশি। অনেকেই বেশি সন্তানের চাপ নিতে রাজি নয় বলে মন্তব্য করেছে "এমনিতেই চাপের ঠেলায় আমরা হিমশিম" মন্তব্য করেছেন একজন। অনেকেই "কর্মক্ষেত্রে সঙ্কটের" কথা তুলে ধরেছেন। মাতৃত্বকালীন বা পিতৃত্বকালীন ছুটি নেবার পর কাজে ফিরে যাওয়ার সমস্যা, মাতৃত্বকালীন এমনকি সাধারণ সুযোগসুবিধার অভাবের কথাও উঠে আসছে সামজিক মাধ্যমে। চীনে অনেক নারী এখন সন্তান পালনের চেয়ে কেরিয়ার তৈরির দিকে বেশি করে ঝুঁকছেন চীনের শ্রম বাজারও যেভাবে সঙ্কুচিত হয়েছে, তাতে তরুণ চীনাদের এখন অনেক বেশি ঘণ্টা কাজ করতে হচ্ছে। ওভারটাইম এবং বাড়তি সময়ের কাজ এখন তরুণদের জন্য নৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর চীনে মেয়েরা এখন উচ্চ শিক্ষা এবং চাকরিবাকরির দিকে ঝুঁকছে আগের তুলনায় অনেক বেশি। তারা অল্প বয়সে বিয়ে করে সন্তান নিতে আগের মত আগ্রহী নন। চীনের আগের নীতি কী ছিল? এমনকি ২০১৬ সালে যখন চীন বিতর্কিত এক সন্তান নীতির অবসান ঘটিয়ে দম্পতিদের দুটি সন্তান নেবার অনুমতি দেয়, তখন নীতি পরিবর্তনের পর দুবছর জনসংখ্যা বাড়লেও তা ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ইকনমিস্ট ইন্টালিজেন্স ইউনিটের প্রধান অর্থনীতিবিদ মিজ ইউয়ে সু বলছেন: "দুই সন্তান নীতির একটা ইতিবাচক প্রভাব জন্মহারের ওপর পড়েছিল ঠিকই, কিন্তু সেটা ছিল স্বল্প মেয়াদী।" চীনে জন্মসংখ্যা বৃদ্ধি ঠেকাতে ১৯৭৯ সালে যে এক সন্তান নীতি চালু করা হয়েছিল, দীঘদিন চালু থাকা সেই নীতির প্রভাব দেখা গেছে চীনের জনসংখ্যা কাঠামোয���। কঠোর সেই নীতি না মানলে জরিমানার বিধান ছিল, আইন অমান্যকারীদের শাস্তি হিসাবে চাকরিচ্যুত করা হতো এবং কখনও কখনও বাধ্যতামূলক গর্ভপাতও কের দেয়া হতো। ওই আইনের ফলে চীনে নারী পুরুষের সংখ্যায় ভারসাম্যের বিশাল অভাব তৈরি হয়েছে। দেশটিতে এমনতেই ঐতিহাসিকভাবে পুরুষদের প্রাধান্য নারীদের চেয়ে বেশি। "বিয়ের বাজারে এটা বড়ধরনের সমস্যা তৈরি করেছে, বিশেষ করে যেসব পুরুষ আর্থসামাজিক ভাবে দুর্বল অবস্থানে রয়েছে তাদের জন্য," বলছেন সিঙ্গাপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মু ঝেং। চীনে নারী পুরুষ সংখ্যায় ভারসাম্যের বিশাল অভাব তৈরি হয়েছে। পুরুষের সংখ্যা নারীর তুলনায় কয়েক লাখ বেশি হয়ে গেছে, ফলে পুরুষদের বিয়ের জন্য নারী পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে চীন কি তার জন্ম নিয়ন্ত্রণ নীতি পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেবে? চীনে সর্বসাম্প্রতিক এই আদমশুমারির আগে বিশেষজ্ঞরা আঁচ অনুমান করছিলেন যে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি তুলে নেয়া হবে। তবে দেখে মনে হচ্ছে চীন এ ব্যাপারে সতর্কতার সাথে এগোতে চাইছে। কোন কোন বিশেষজ্ঞ বলছেন সে ধরনের পদক্ষেপ "অন্য ধরনের সমস্যার" জন্ম দিতে পারে। তারা ইঙ্গিত করছেন এ ধরনের পদক্ষেপ শহর ও গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে বিশাল ফারাক তৈরি করবে। বেইজিং এবং শাংহাইয়ের মত বড় এবং ব্যয়বহুল জীবনযাত্রার শহরে নারীরা সন্তান নেবার ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করবে না বা তেমন উৎসাহ দেখাবে না। কিন্তু জনসংখ্যার লাগাম না টানলে গ্রাম এলাকায় প্রথাগতভাবে নারীদের অনেক সন্তান হবার প্রবণতা বাড়বে। কারণ, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রথাগত ভাবে চীনারা বড় পরিবার চায়। সরকারের নীতি নির্ধারণের সাথে যোগাযোগ আছে এমন একজন বিশেষজ্ঞ বলছেন এর ফলে গ্রামীণ পরিবারগুলোর মধ্যে দারিদ্র ও বেকারত্ব বৃদ্ধি পাবে। বিশেষজ্ঞরা আগে এমন হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন যে চীনের জনসংখ্যা কমে গেলে বিশ্বের অন্যান্য দেশে তার বিশাল প্রভাব পড়তে পারে। উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বিজ্ঞানী ড. ই ফুক্সিয়ান বলছেন: "চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে খুব দ্রুত এবং বিশ্বের বহু শিল্প চীনের ওপর নির্ভরশীল। ফলে চীনের কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমে গেলে তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব হবে চীনের জন্য খুবই নেতিবাচক।" চীন ঘোষণা করেছে সে দেশে দম্পতিরা এখন থেকে তিনটি প��্যন্ত সন্তান নিতে পারবেন। আদমশুমারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে দেশটিতে জন্মহার উল্লেখযোগ্যভাবে পড়ে গেছে। +text: বাংলাদেশে এসিড হামলার ঘটনা আগের চেয়ে অনেক কমেছে। (ফাইল ছবি) বাংলাদেশে এসিড হামলার শিকারদের নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান এসিড সারভাইভার্স ফাউন্ডেশন এক গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য। গবেষণায় বলছে, ২০০২ সালে সবচেয়ে বেশি এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে। যার সংখ্যা ছিলো প্রায় পাঁচশোটির মতো। তবে ২০০৯ সাল থেকে এর পরিমাণ কমতে শুরু করেছে যা ২০১৮ সালে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৮টিতে। গত বছর এসব হামলার ঘটনায় ২২জন আক্রান্ত হয়েছেন। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক সেলিনা আহমদে এনা বলেন, সরকারি পর্যায়ে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দুটি শক্ত আইন প্রণয়ন করায় এই অপরাধ কমেছে। গণমাধ্যমেরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এই অপরাধ দমনে ভূমিকা রেখেছে। আরো পড়তে পারেন: 'প্রত্যেক পুরুষ আপনার সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে চায়' রং ফর্সা করার মূল্য কীভাবে দিচ্ছেন লাখ লাখ নারী থাকার জায়গা পেলেন ঝালকাঠির সেই নারী নাপিত তিনি বলেন, এই অপরাধের সাজা কার্যকর হওয়ার নজির কম থাকলেও তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত গণমাধ্যমে এর ব্যাপক প্রচারের কারণে মানুষের মধ্যে এসিড অপরাধের প্রতি ভীতি তৈরি করেছে। যার কারণে এটি কমে এসেছে। এছাড়া, এসিড কেনা-বেচা ও পরিবহনের আইন কঠোর হওয়ায় সেটিও পরোক্ষভাবে ভূমিকা পালন করেছে। তবে মিজ এনা বলেন, "নারীদের প্রতি ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে, যৌন হয়রানির ঘটনা বেড়েছে। আবার বার্ন ভায়োলেন্স সেক্ষেত্রে এর হার বেশি, বাল্যবিবাহের ধরণ বেড়েছে।" এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে যে আইন আছে তার সঠিক বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এছাড়া পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় নারীর প্রতি যে নেতিবাচক ধারণাগুলো আছে, তা সমাজে বিদ্যমান। সুশাসনের অভাবের কারণে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, "শাস্তিহীনতা ও বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি সেটা খুব প্রকট। তারপর আমরা নীরবে সয়ে যাওয়ার যে সংস্কৃতি সেটাও একটা বড় কারণ। " এসব কারণেই নারীদের উপর এ ধরণের সহিংসতা কমছে না বলে মনে করেন তিনি। গত ১০ বছরে বাংলাদেশে এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা নাটকীয়ভাবে কমে গেছে। তবে বেড়েছে নারীর উপর অন্যান্য ধরণের সহিংসতা বেড়েছে। +text: দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের উপ-পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, রবিবার কমিশনের সভায় অনুমোদনের পর মামলাটি করা হয়। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি করা হয়। দুদকের নিজস্ব অফিসে এটাই সংস্থাটির করা প্রথম মামলা। এর আগে দুর্নীতির মামলাগুলো থানায় করা হয়েছে। রবিবার দুদক আইনের যে সংশোধিত বিধিমালা প্রকাশ করা হয়,তাতে দুর্নীতির তফসিলভুক্ত অপরাধের মামলা করতে আর থানায় যেতে হবে না, নিজ দফতরেই মামলা করা যাবে। দুদকের একজন পরিচালককে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দেয়ার অভিযোগ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে তলব করা হয়েছে। মি. ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ওই মামলায় ডিআইজি মিজানুর রহমান, তার স্ত্রী, ছোট ভাই এবং ভাগ্নের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে তিন কোটি সাত লাখ ৫ হাজার ২১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও তিন কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে দুদক। আরো পড়ুন: 'পুলিশ কর্মকর্তার ঘুষ': সাময়িক বরখাস্ত দুদক কর্মকর্তা দুর্নীতির অভিযোগে এখন প্রশ্নের মুখে দুদক নিজেই বাংলাদেশে তিনটি খাতে দুর্নীতির অভিযোগ বেড়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের হিসাবে, দুর্নীতি পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বাংলাদেশে সেই সঙ্গে দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের সঙ্গে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করতে মিজানুর রহমানকে ১ লা জুলাই দুদক কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে। একই দিন দুপুর ২টায় দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে। ওই ঘুষের লেনদেনের সংবাদ প্রচার করায় বেসরকারি একটি টেলিভিশনের সাংবাদিককেও ২৬জুন তলব করেছে দুদক। গত ১৯ জুন মিজানুর রহমানের স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং ব্যাংক হিসাবের লেনদেন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একজন নারীকে জোর করে বিয়ে ও নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার পর ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ঢাকা মহানগর পুলিশের তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে মিজানুর রহমানকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠলে গত বছর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। এর মধ্যে কয়েক সপ্তাহ আগে ডিআইজি মিজানুর রহমান দাবি করেন যে, তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ ন���য়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্তের পর সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে দুদক, যার তদন্ত এখন চলছে। তবে এসব বিষয়ে মিজানুর রহমানের কোন বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: যে কারণে বাংলাদেশের জন্য ভয়ংকর আফগানিস্তান উদ্ধারকর্মীর বর্ণনায় মৌলভীবাজারের ট্রেন দুর্ঘটনা যে কারণে জার্মানির মিরোস্লাভ ক্লোসার চেয়েও এগিয়ে ব্রাজিলের মার্তা জাপানী শিবিরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বন্দীদের ভয়াবহ জীবন সম্পদের তথ্য গোপন এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক মিজানুর রহমান, তার স্ত্রী ও স্বজনদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। +text: করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক এখনো তৈরি করা যায়নি এই ভাইরাসের সংক্রমণ আরও কতটা ব্যাপকভাবে ছড়াতে পারে এবং কত মানুষ এতে আক্রান্ত হতে পারে তা নিয়ে চিন্তিত বিশেষজ্ঞরা। এখনো এটিকে বিশ্ব মহামারী বলে ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু বিশ্বকে এই করোনাভাইরাসের এক মহামারীর মুখোমুখি হতে হবে- এমন আশংকায় কর্মকর্তারা এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। মহামারী কী? একই সময়ে যখন বিশ্বজুড়ে বহু দেশের মানুষ কোন সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হন, তখন একে বিশ্ব মহামারী বলে বর্ণনা করা হয়। এর সাম্প্রতিক একটি উদাহারণ হচ্ছে ২০০৯ সালের সোয়াইন ফ্লু। বিশেষজ্ঞদের ধারণা ঐ বিশ্ব মহামারীতে শত শত মানুষ মারা গেছে। নতুন কোন ভাইরাস, মানুষ সহজেই যেটির সংক্রমণের শিকার হয় এবং যা মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়, সেটি বিশ্ব মহামারীতে রূপ নেয়ার আশংকা বেশি। করোনাভাইরাসের বেলায় এই সবগুলো বৈশিষ্ট্যই দেখা যাচ্ছে। করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে বাংলাদেশে স্কুলছাত্রীরা মাস্ক ব্যবহার করছে যেহেতু এখনো পর্যন্ত এর কোন প্রতিষেধক টিকা বা চিকিৎসা আবিষ্কৃত হয়নি, এটির বিস্তার বন্ধ করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কখন বিশ্ব মহামারী ঘোষণা করা হয় কোন সংক্রমণকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডাব্লিউএইচও কখন বিশ্ব মহামারী ঘোষণা করবে, তার আগে কিছু ধাপ আছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যেভাবে ছড়িয়েছে, তাতে এটি এখন বিশ্ব মহামারী ঘোষণার মাত্র এক ধাপ নিচে আছে। করোনাভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে ছড়াচ্ছ এবং চীনের আশে-পাশের দেশ তো বটেই, বহু দূরের দেশেও ছড়��য়েছে। যদি বিশ্বের নানা অঞ্চলে বহু মানুষের মধ্যে এটির বিস্তার অব্যাহত থাকে, তাহলে এটিকে তখন 'বিশ্ব মহামারী' ঘোষণা করতে হবে। সেই আশংকা কতটা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কতটা মারাত্মক এবং এটি কত দূর পর্যন্ত ছড়াতে পারে, তা এখনো পরিস্কার নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ডঃ টেড্রোস অ্যাডহ্যানম জেব্রেইয়েসাস বলেছেন, চীনের বাইরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এবং বিস্তার এখনো বেশ ধীরগতিতে ঘটছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১৭ হাজার মানুষ করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শিকার হয়েছেন এবং মারা গেছেন ৩৬০ জনের মতো। এদের বেশিরভাগই চীনে। চীন থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস চীনের বাইরে দেড়শোর বেশি সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মারা গেছে মাত্র একজন, ফিলিপিনে ডঃ জেব্রেইয়েসাস বলেছেন, যদি এই সংক্রমণ যেখান থেকে ছড়িয়েছে সেখানেই এটির মোকাবেলা করা যায়, তাহলে অন্য দেশে এটি খুব কমই ছড়াবে, বা ছড়ালেও সেটি হবে খুবই ধীর গতিতে। প্রতিটি মহামারীর চরিত্র আলাদা। কাজেই একটা ভাইরাস ছড়িয়ে না যাওয়া পর্যন্ত এর পুরো প্রভাব অনুমান করা কঠিন। অন্যান্য খবর: পিএইচডি জালিয়াতি হচ্ছে, বন্ধ করা উচিত - হাইকোর্ট ব্যাংক বন্ধ হলে জমা টাকা ফেরত পাওয়া যাবে? চীনে ইস্যু করা সব ভিসা বাতিল করলো ভারত বিশেষজ্ঞদের ধারণা, করোনাভাইরাস হয়তো সাম্প্রতিককালে ছড়িয়ে পড়া অন্য কিছু রোগ, যেমন সার্সের মতো অতটা মারাত্মক নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এরপরও করোনাভাইরাস নিয়ে 'পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি অব ইন্টারন্যাশনাল কনসার্ন' ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ এই ভাইরাস নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো ব্যাপার আছে এবং সেজন্যে তারা জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একথাও বলছে, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে যদিও প্রতিটি দেশের ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ, কিন্তু আন্তর্জাতিক ভ্রমণ বা বাণিজ্যে অপ্রয়োজনীয় বিঘ্ন ঘটায়, তেমন ব্যবস্থা নেয়ার সময় এখনো হয়নি। প্রায় এক মাস আগে চীনে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর এখন তা ছড়িয়ে পড়েছে ২০টির বেশি দেশে। +text: নরেন্দ্র মোদী ও ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের অফিস এ নিয়ে মুখ না-খুললেও দিল্লিতে সরকারি সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে মি ট্রাম্প যে আগামী ২৬ জানুয়ারির ওই অনুষ্ঠানে আসতে পারছেন না ত��� তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত দিল্লিকে রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। মি ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানানোর খবর আগেভাগে মিডিয়াকে জানানোর কী দরকার ছিল এখন সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। অনেকে আবার ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের সঙ্গেও এই সিদ্ধান্তের সম্পর্ক টানছেন। প্রজাতন্ত্র দিবসে বারতের সামরিক কুচকাওয়াজ সাড়ে তিন বছর আগে বারাক ওবামা যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, তখন স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণের সময়সূচী কিছুটা পাল্টেই তিনি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন। প্রতি বছর কোনও বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধানকে বিশেষ সম্মান দেখাতেই ভারত তাদের এই আমন্ত্রণ জানিয়ে থাকে। তবে এবার ডোনাল্ড ট্রাম্প যে সেই দাওয়াত ফিরিয়ে দেবেন তা কিন্তু দিল্লির কল্পনার বাইরে ছিল। সাবেক পররাষ্ট্র সচিব কানওয়াল সিবাল বিবিসিকে বলছিলেন, "আসলে অনেক ভাল হত এই আমন্ত্রণ জানানোর কথা ঘোষণাই না-করা হলে। তাহলে জবাবটা 'না' হলেও তা নিয়ে কোনও হইচই হত না।" "এধরনের ক্ষেত্রে সাধারণত আগে অনানুষ্ঠিকভাবে জেনে নেওয়া হয়, সেই বিদেশি অতিথি আসতে পারবেন কি না - তারপরই আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পাঠানো হয়।" দিল্লিতে প্রেসিডেন্ট ওবামা ও প্রধানমন্ত্রী মোদী। জানুয়ারি, ২০১৫ "কিন্তু এখানে খবরটা আগেভাগেই ফাঁস হয়েছে, এবং বিষয়টা অবশ্যই অন্যভাবে সামলানো উচিত ছিল।" দিল্লির কূটনৈতিক সংবাদদাতা মাহা সিদ্দিকিও জানাচ্ছেন, ২৬ জানুয়ারি ভারতে আসতে না-পারার কারণ হিসেবে হোয়াইট হাউস প্রেসিডেন্টের ব্যস্ত সময়সূচীকেই তুলে ধরেছে। কারণ তার মাত্র দুদিন পরেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণ দেওয়ার কথা। কিন্তু গত দুবছরে বিশ্বের নানা প্রান্তে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে যেভাবে বারবার ঘনিষ্ঠ আলিঙ্গনে দেখা গেছে, তাতে দিল্লিরও ধারণা ছিল ভারতের জন্য নিশ্চয় মি ট্রাম্প কোনও না কোনওভাবে সময় বের করবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ও লোকসভার এমপি মমতাজ সঙ্ঘমিতা অবশ্য অন্য কথা বলছেন। মোদী ও ট্রাম্পের আলিঙ্গন। জুন, ২০১৭ মিস সঙ্ঘমিতার কথায়, "এত বড় মাপের কোনও রাজনীতিবিদের সেই সময় কোনও ব্যস্ততা বা অন্য কোনও কাজ পড়ে যেতেই পারে।" "তবে আমি যেটা বলব, বাইরে যে ঘনিষ্ঠতা দেখা যায় সেটাই কিন্তু সব নয়!" "আসলে সব সম্পর্কের ক্ষেত্রেই বোধহয় একটা কথা সত্যি - যেমনটা আমরা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রেও বলি - যে তারা যেমন শত্রু, তেমনি মিত্রও! একই কথা বড় বড় দেশগুলোর ক্ষেত্রেও খাটে।" "আর তা ছাড়া যতই নিবিড় কোলাকুলি হোক, আপনি কি সত্যিই বিশ্বাস করেন ওই মাপের নেতারা অত ঘনিষ্ঠ হতে পারেন? না কি হওয়া সম্ভব?", প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন তিনি। আসলে মোদী-ট্রাম্প আলিঙ্গনের বাইরেও যে ভারত-মার্কিন সম্পর্কে অনেক সূক্ষ ভাঁজ আছে, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল এ মাসের গোড়াতেই - যখন মার্কিন পণ্যের ওপর চড়া হারে শুল্ক বসানোর জন্য মি ট্রাম্প প্রকাশ্যেই ভারতকে আক্রমণ করেন। আমেরিকায় তৈরি হার্লে ডেভিডসন বাইকের ওপর চড়া শুল্ক বসানোয় ভারতের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হার্লে ডেভিডসন বাইক থেকে শুরু করে আরও অনেক মার্কিন পণ্যর ওপর ভারতে যে একশো শতাংশ হারে শুল্ক বসাচ্ছে, সেই নালিশও তিনি করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছে। এদিকে ইরানের ওপর কঠোরতর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা চালু হতে আর এক সপ্তাহও বাকি নেই। কিন্তু ভারত জানিয়ে রেখেছে তার পরও ইরান থেকে তেল কেনা তারা বন্ধ করতে পারবে না। ভারতের সাবেক শীর্ষ কূটনীতিক কানওয়াল সিবাল মনে করছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফর বাতিলের পেছনে এটাও অন্যতম কারণ হতে পারে। তিনি বলছেন, "আমেরিকা যদি সত্যিই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তাহলে এই ধরনের হাই-প্রোফাইল সফরের জন্য যে রাজনৈতিক পরিবেশটা দরকার - তা বিষিয়ে যেতে বাধ্য।" ইরানের একটি তেল টার্মিনাল। নিষেধাজ্ঞার পরও ইরান থেকে তেল কিনতে মরিয়া ভারত "হয়তো সে কারণেই হোয়াইট হাউস মনে করেছে এই ধরনের একটা কূটনৈতিক অনিশ্চয়তার আবহে এটা প্রেসিডেন্টের ভারত সফরে যাওয়ার ঠিক আদর্শ পরিস্থিতি নয়!", বলছিলেন কানওয়াল সিবাল। নরেন্দ্র মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবসেই অতিথি করে এনেছিলেন প্রেসিডেন্ট ওবামাকে। নির্বাচনে যাওয়ার আগে শেষ প্রজাতন্ত্র দিবসেও তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে দিল্লিতে দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এখন এটা পরিষ্কার যে সে পরিকল্পনা এখন আর দিনের আলো দেখতে পারছে না! আগামী বছর ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনার্ড ট্রাম্পকে প্রধান অতিথি হিসেবে আসার যে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, হোয়াইট হাউস তা ফিরিয়ে দিয়েছে। +text: বাংলাদেশের হাটগুলোতে এখন দেশি গরু বেশি। প্রতিবছর এই সময়ের আগেই বাংলাদেশে গরু-ছাগল কেনা-বেচা বেশ জমজমাট হয়ে ওঠে। ভারত থেকে অবৈধ পথে গরু আসা অনেকটা কমে যাওয়ার পর গত কয়েক বছরে বাংলাদেশজুড়ে বহু ছোট-ছোট খামার গড়ে উঠেছে যার মূল লক্ষ্য থাকে কোরবানির পশুর হাট। গ্রামাঞ্চলে বহু পরিবার শুধু কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য গরু-ছাগল লালন পালন করে। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে এবার গরু-ছাগল কেনা বেচা নিয়ে এক ধরণের সংকট হতে পারে বলে বিক্রেতা ও ক্রেতারা আশংকা করছেন। ঢাকার কাছে সাভারে একটি সমন্বিত কৃষি খামার পরিচালনা করেন রাজিয়া সুলতানা। প্রতিবছর ঈদ-উল-আযহার সময় তিনি ২৫ থেকে ৩০টি গরু বিক্রি করেন। এবার কোরবানির ঈদে বিক্রি করার জন্য তিনি খামারে কোন গরু রাখেননি। মিস্ সুলতানা আগে থেকেই অনুমান করেছিলেন যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে কোরবানির পশুর বাজার মন্দা হতে পারে। প্রতিবছর কোরবানির ঈদের এক থেকে দেড় মাস আগে অনেক পরিচিত ক্রেতা মিস্ সুলতানার সাথে যোগাযোগ শুরু করেন। কিন্তু এবার সে পরিস্থিতি নেই। রাজিয়া সুলতানা বলছিলেন, পরিচিত ক্রেতাদের কাছ থেকে কোন সাড়া-শব্দ নেই। সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে অনলাইনে কোরবানি "কিছু সরকারি কর্মকর্তা আছে যারা আমার কাছ থেকে প্রতিবছর গরু নিতো। করোনার কারণে তারা গরু কোথায় কোরবানি দিবে, মাংস কোথায় বিতরণ করবে - এসব নিয়ে তারা টেনশনে আছে," বলেন মিস্ সুলতানা। মার্চ মাস থেকে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে চরম স্থবিরতা নেমে এসেছে। বহু মানুষ হয়তো চাকরি হারিয়েছে নতুবা তাদের আয় কমে গেছে। যাদের আয় আছে তারাও স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনা করে পশু কোরবানি দেবার ক্ষেত্রে অনেকে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। যেমনটা বলছিলেন, ঢাকার বাসিন্দা চয়নিকা তাসনিম। তিনি বলেন, " কী করবো বুঝতে পারতেছি না। আরো ১৫দিন অপেক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেব। নির্ভর করবে দেশের পরিস্থিতির উপরে।" বাংলাদেশের প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, গত বছর কোরবানির জন্য দেশে এক কোটি ১৭ লক্ষ পশু ছিল। এর মধ্যে গরু ৪৫ লাখ এবং ছাগল ও ভেড়া ৭১ লাখ। এ বছরও হিসেব অনেকটা কাছাকাছি। কিন্তু এবার বাজার মন্দা হবে বলে বিক্রেতাদের আশংকা। এক সময় ঢাকায় চাকরি করতেন রাসেল আহমেদ। বছর তিনেক আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে বাগেরহাটে একটি ছোট খামার দিয়েছেন তিনি। ঈদ-উল-আযহাকে টার্গেট করে খামারে গরু লালন পালন করলেও বাজার কেমন হবে সেটি নিয়ে তার মনে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। একদিকে পশু কেনা-বেচা, এরপর চামড়া কেনা -বেচাসহ ঈদ-উল-আযহা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে সে জায়গায় একটি বড় ধাক্কা আসতে যাচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা আশংকা করছেন। বাংলাদেশে ঈদ-উল-আযহা পালিত হবে এক মাসের কম সময়ের মধ্যে। +text: ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় প্রেসিডেন্ট যিনি কংগ্রেসে ইমপিচমেন্টের শিকার হলেন দু'টি অভিযোগের ক্ষেত্রেই অভিশংসনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট পড়েছে প্রতিনিধি পরিষদে। প্রথম অভিযোগের ক্ষেত্রে ২৩০ ভোট পড়েছে অভিশংসনের পক্ষে এবং ১৯৭ ভোট পড়েছে বিপক্ষে। দ্বিতীয় অভিযোগের ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় ২১৬ ভোটের বেশি সংখ্যক ভোট পড়েছে। ঐ অভিযোগে অভিশংসনের পক্ষে পড়েছে ২২৯ ভোট ও বিপক্ষে ১৯৮ ভোট। এই ভোটাভুটি যখন চলছিল তখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি প্রচারণা সভায় ভাষণ দিচ্ছিলেন। মিশিগানের ব্যাটল ক্রিকের এই জনসভায় ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, "আমরা যখন মিশিগানের জন্য লড়াই করছি, নতুন কর্মসংস্থান করছি, তখন কংগ্রেসের কট্টর বামপন্থীরা ঘৃণা ও বিদ্বেষে পূর্ণ হয়ে আছে, আপনার দেখতেই পাচ্ছেন কী ঘটছে সেখানে?" হোয়াইট হাউজ একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলছে, সেনেট ট্রায়ালে অভিযোগ থেকে 'পুরোপুরি অব্যাহতি পাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত' প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ছাড়া আর যে দুজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট এর আগে অভিশংসিত হয়েছেন তারা হচ্ছেন অ্যান্ড্রু জনসন এবং বিল ক্লিনটন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তৃতীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে হাউজ অব রেপ্রেজেন্টেটিভে অভিশংসিত হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এখন তার প্রেসিডেন্ট থাকতে পারা না পারা নির্ভর করছে আসছে জানুয়ারিতে সেনেটে শুনানিতে। ডেমোক্রেটিক হাউজ স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি, বুধবার ক্যাপিটলে হাউজ সদস্যদের বক্তব্য: ডেমোক্রেটিক হাউজ স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি একটি উদ্বোধনী ভাষণের মাধ্যমে বুধবারের শুনানি শুরু করেন। তিনি বলেন, "শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে আমেরিকানরা গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য লড়েছে এবং মরেছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমাদের প্রতিষ্ঠাতার যে প্রজাতন্ত্রে��� দর্শন তা হোয়াইট হাউজের কর্মকাণ্ডে হুমকির মুখে পড়েছে"। "আমরা যদি এখনই ব্যবস্থা না নেই তাহলে তা হবে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়। এটা দুঃখজনক যে প্রেসিডেন্টের কাণ্ডজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড এই ইমপিচমেন্টকে জরুরি করে তুলেছে। তিনি আমাদের জন্য আর কোন সুযোগই রাখেননি।" ডেমোক্রেটিক প্রতিনিধি জো কেনেডি, যিনি প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির একজন প্রপৌত্র, তিনি তার বক্তব্যে নিজের সন্তানদের সম্বোধন করে বলেন, "প্রিয় এলি এবং জেমস: এটা এমন একটা মুহূর্ত যেটাকে তোমরা তোমাদের ইতিহাসের বইতে পড়বে"। ম্যাসাচুসেটসের এই কংগ্রেসম্যান প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে 'ক্ষমতাকে নিজের মানুষদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের' অভিযোগ তোলেন। হাউজ জুডিশিয়ারি কমিটির শীর্ষ রিপাবলিকান ডগ কলিন্স অবশ্য ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে অবৈধ এবং পক্ষপাতমূলক তদন্ত চালানোর অভিযোগ তোলেন। মি. কলিন্স বলেন, "এই ইমপিচমেন্টের ভিত্তি হলো পূর্বানুমান"। এই ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া চলার সময় ডেমোক্র্যাটদের যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ধরে রাখার নির্দেশনা দিয়েছিলেন মিজ পেলোসি, এমনটি বলা হচ্ছে। বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের তিনি বলেন, তিনি এই প্রক্রিয়াটি নিয়ে 'দুঃখ ভারাক্রান্ত'। আরো খবর: স্কুলে বাবরি মসজিদ ভাঙার প্রতীকী অনুষ্ঠান নাগরিকত্ব আইন: আসামে বাড়ছে 'অসমীয়া আবেগ' অপরাধ বিষয়ক তথ্যচিত্র দেখে বন্ধুকে হত্যার পরিকল্পনা ভাষা না জানায় বিদেশে বাংলাদেশি শ্রমিকের হয়রানি বিতর্কিত 'রাজাকারের তালিকা' স্থগিত করলো সরকার দেশজুড়ে বিক্ষোভকারীরা ইমপিচমেন্টের সমর্থনে আন্দোলন করেছে বুধবার ক্যাপিটলের কাছে এক ব্যক্তি ট্রাম্পের সমর্থনে প্ল্যাকার্ড দেখাচ্ছেন ইমপিচমেন্ট শুরু হওয়ার চব্বিশ ঘণ্টা আগে থেকেই এর পক্ষের আন্দোলনকারীরা রাস্তায় নেমে আসে। মঙ্গলবার রাতে নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে শত শত মানুষের জমায়েত হয়। তারা শ্লোগান দিচ্ছিলো, "আমাকে বলো, কে আইনের ঊর্ধ্বে? কেউ নয়, কেউ নয়"। বুধবার (যুক্তরাষ্ট্র সময়) ভোটের আগের রাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি ছয় পাতার চিঠি লেখেন ন্যান্সি পেলোসিকে, যেখানে তিনি মিজ পেলোসিকে 'আমেরিকান গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধ শুরু করবার' জন্য অভিযুক্ত করেন। হোয়াইট হাউজের প্রকাশ করা এই চিঠিতে প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, 'এই ইমপিচমেন্ট কেলেঙ্কারির শুরু ��েকেই তিনি মৌলিক সাংবিধানিক নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন'। প্রকৃতপক্ষে হাউজ জুডিশিয়ারি কমিটির প্রধান তাকে প্রমাণ দেয়ার জন্য জনসমক্ষেই আহ্বান জানিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট এটাকে রাজি হলে তার আইনজীবীর দল সাক্ষীদের জেরা করারও সুযোগ পেতেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। এখন ইমপিচমেন্টের পরবর্তী ধাপ হচ্ছে সেনেটের শুনানি যেটা হবে আগামী জানুয়ারি মাসে। কিন্তু রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত সেনেটে এই ইমপিচমেন্ট ধোপে টিকবে না বলেই ধারণা। ফলে প্রেসিডেন্ট পদও হয়তো হারাতে হবে না মি. ট্রাম্পকে। ট্রাম্পকে কী আসলেই ক্ষমতাচ্যুত করা সম্ভব? হাউজ তার বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগে সংখ্যাগরিষ্ঠ রায় দিয়েছে - একটি অভিযোগ তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। আরেকটি হচ্ছে তিনি কংগ্রেসের কার্যক্রমে বাধ সেধেছেন। +text: চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে সেনা সদস্যদের একটি দল রাত সোয়া সাতটার দিকে সেনা কম্যান্ডোদের অভিযানে সন্দেহভাজন ছিনতাইকারীকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়। পরে সে মারা যায়। চট্রগ্রামে সেনানিবাসের জিওসি মে. জে. মতিউর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন বিমানের ভেতরে অভিযান চালানোর সময় ঔ ব্যক্তিকে নিবৃত করার চেষ্টা করা হয়। ঐ ব্যক্তি আত্মসমর্পনে অস্বীকৃতি জানালে গুলি চালানো হয়। পরে তার মৃত্যু হয়েছে। জে. রহমান জানান, লে. কর্নেল ইমরুলের নেতৃত্বে একটি সেনা কম্যান্ডো দল মাত্র আট মিনিটে অভিযান শেষ করে। তিনি জানান, এই কম্যান্ডো দলটিই ঢাকায় হলি আর্টিজান সন্ত্রাসী হামলার মোকাবেলায় অভিযান পরিচালনা করেছিল। জে. রহমান জানান, নিহত যাত্রীটি বলেছিল, তার নাম মাহাদি। সে প্রধানমন্ত্রীএবং তার স্ত্রীর সাথে কথা বলতে চেয়েছিল। সকল যাত্রী ও ক্রু সুস্থ রয়েছেন বলে কর্মকর্তারা বলছেন। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের রানওয়েতে বিজি১৪৭ এই ঘটনার পর একটি সংবাদ সম্মেলনে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল নাইম হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ''কথিত ছিনতাইকারী ব্যক্তিকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়েছে। তার কাছে একটি অস্ত্র ছিল এবং বুকে বোমা বাঁধা থাকতে পারে। সেরকম তার বাধা রয়েছে।'' ''তিনি পাইলটের মাথায় অস্ত্র ধরে দাবি করেছিলেন যে, তার স্ত্রীর সঙ্গে সমস্যা নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে ��েয়েছিলেন।'' বিকাল পাঁচটার দিকে ওই ঘটনা শুরুর পর থেকেই বিমানটি ঘিরে রেখেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তাদের সঙ্গে সেনা কমান্ডো ও বিমান বাহিনীর সদস্যরাও যোগ দেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকরা জানিয়েছে, সাতটার পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিমানে অভিযান শুরু করেন। রাত আটটা থেকে বিমানবন্দর আবার খুলে দেয়া হয়েছে। এর আগে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মহিবুল হক বিবিসিকে বলেছিলেন, বিমানটি জরুরি অবতরণের পর পাইলট ও বেশিরভাগ যাত্রীকে বের করে আনা হয়। তবে একজন ক্রু ও সন্দেহভাজন যাত্রী ভেতরে রয়েছে। তার সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে তাদের সাথে কী আলোচনা চলছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেননি মি: হক। চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এক যাত্রীর ভাষ্য ওই বিমানটির একজন যাত্রী, বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিন খান বাদল স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, ''বিমানে একজন যাত্রী অস্ত্র নিয়ে বিমানটি হাইজ্যাক করার চেষ্টা করেছিল। সে বাঙ্গালি। সে গুলী করেছে তবে সব যাত্রীকে নিরাপদে নামিয়ে আনা হয়েছে। পাইলট আমার কাছে এসেছিল, সে বলেছে হাইজ্যাকার একজন, সে গুলি করেছে। পাইলট তাকে পারসুয়েট করার চেষ্টা করেছে। হাইজ্যাকার বলেছে, সে শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলতে চায়।'' বিমানে থাকা একজন যাত্রী ওসমান গণি সাংবাদিকদের বলেছেন, ঢাকা থেকে বিমানটি রওনা হওয়ার একটু পরেই একজন যাত্রী ককপিটের দিকে যায়। এরপর আমরা কিছু গুলির শব্দ শুনতে পাই। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে থাকা একজন যাত্রী শিউলি রানী দে স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলছেন, ''আমার বিমান ছিল ৬টা ২০ মিনিটে। তার আগেই আমি বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট অবতরণ করতে দেখি। তখন আমি দেখতে পাই, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, র‍্যাবের গাড়িগুলো গিয়ে বিমানটি ঘিরে ফেলেছে।'' প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ-২ বইয়ের বিক্রি বন্ধ আইএসের হাজার হাজার বিদেশী জিহাদির পরিণতি কি ঢাকায় জাপানি বিমান ছিনতাই নাটক শেষ হয় যেভাবে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানের একটি বিমানের একজন যাত্রী ছিনতাই চেষ্টা করলেও, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেটি ব্যর্থ করে দিয়েছে। +text: মধ্যপ্রাচ্যে কুস্তি জনপ্রিয় খেলা ওয়ার্ল্ড রেসলিং এন্টারটেইনমেন্ট অনেক আয়���জন করে জেদ্দায় এই ম্যাচ আয়োজন করেছিল। সৌদি আরব এবং ইরানের দুই দেশের প্রতিযোগী লড়েন ম্যাচটিতে। জিতেছেন অবশ্য সৌদি কুস্তিগির। দর্শক সারিতে নারী পুরুষ উভয়েই উপস্থিত ছিলেন, যদিও কোন নারী রেসলার লড়াইতে অংশ নেননি। বিজ্ঞাপনের সময় সংক্ষিপ্ত পোশাক পড়া নারী রেসলারদের দেখানো শুরু হলে, সম্প্রচার বন্ধ করে দেয় রাষ্ট্রীয় টিভি। নারীসহ ৬০ হাজার দর্শক উপভোগ করেছেন রেসলিং কিন্তু কুস্তি চলাকালীন সময় অডিয়ামের বড় টিভি স্ক্রিনে সে দৃশ্য তৎক্ষণাৎ বন্ধ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। ফলে রেসলিং অ্যারেনায় উপস্থিত সবাই সে দৃশ্য দেখতে পান। এই 'অশ্লীল' দৃশ্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছে সৌদি জেনারেল স্পোর্টস কর্তৃপক্ষ। রেসলিং বা কুস্তি সৌদি আরবের সমাজের জন্য এক সময় প্রায় অপরিচিত একটি ব্যপার ছিল। যদিও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশে কুস্তি বা রেসলিং খুবই জনপ্রিয় একটি খেলা। গত বছর দুয়েক ধরে একটু একটু করে এ ধরণের বিনোদনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া হচ্ছে দেশটির সমাজকে। আরো পড়ুন: রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘ কি করতে পারে? 'সে তার ঢাল নামিয়ে রেখেছে আর ডানা মেলে দিয়েছে' দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান দেশটির সমাজে যে পরিবর্তন আনার নানা উদ্যোগ নিয়েছেন, এটিও তারই অংশ। গতকালের ঐ ম্যাচ দেখার জন্য অডিটোরিয়ামে নারীসহ ৬০ হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। দেশটিতে নারীরা ইতিমধ্যেই ফুটবল খেলার অনুমতি পেয়েছেন। তবে এর আগে নারী রেসলারদের অংশগ্রহণের সুযোগ না রাখায় ওয়ার্ল্ড রেসলিং এন্টারটেইনমেন্টের সমালোচনা করেন অনেকে। আর ঐ ম্যাচটি নিয়ে দেশটির সামাজিক মাধ্যমে বেশ সরব ছিল। ম্যাচ চলাকালে অডিটোরিয়ামের ভেতরে ইরানের পতাকা ওড়াতে দেখা গেলেও তাতে কর্তৃপক্ষ বাধা দেয়নি। অনেকে এই ব্যপারটির প্রশংসা করে পোষ্ট দিয়েছেন। সৌদি আরবের টেলিভিশনে প্রথবারের মত লাইভ রেসলিং সম্প্রচারের সময়, হঠাৎ পর্দায় স্বল্পবসনা নারী রেসলারের উপস্থিতি দেখা যাওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ। +text: পোর্তোর বিপক্ষে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর ইতালিয়ান ক্লাব ক্যালিয়ারির বিপক্ষে ৩২ মিনিটের মধ্যে তিন গোল দেন রোনালদো এই তিন গোলে তার মোট গোলসংখ্যা দাঁড়ালো ৭৭০। ওদিকে সব মিলিয়ে হাজারের ওপরে গোলের মালিক পেলের অফিসিয়াল গোলসংখ্যা ৭৬৭। তবে রোনালদো ৭৬০ গোল যেদিন স্পর্শ করেন সেদিনই কিছু সংবাদমাধ্যম ও ফুটবলভিত্তিক ওয়েবসাইটে খবর আসে রোনালদোই সর্বোচ্চ গোলদাতা। কিন্তু রোনালদো নিজে ব্যখ্যা করলেন নিজের সোশাল মিডিয়া পোস্টে, কেন তিনি তখনই উদযাপন করেননি। রোনালদো তাঁর বিবৃতিতে লেখেন, "গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই খবর আসছিল, আমি পেলের ৭৫৭ গোলের অফিসিয়াল রেকর্ড ভেঙেছি। আমি এটা নিয়ে চুপ ছিলাম কেন সেই কারণ এখন ব্যাখ্যা করছি।" "আমি সবসময়েই বলে এসেছি, এডসন আরান্তেস দে নাসিমেন্তো পেলের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ছিল, আছে, থাকবে। আমি সেজন্যই তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার ৭৬৭ গোলের রেকর্ডটাই অফিসিয়াল হিসেবে ধরেছি, যেখানে তিনি সাও পাওলো স্টেট দলের হয়ে নয় গোল ও ব্রাজিলের মিলিটারি দলের হয়ে আরও এক গোল করেছেন।" পেলে রোনালদোকে ধন্যবাদ ও অভিবাদন জানিয়ে একটি ইন্সটাগ্রাম পোস্ট দিয়েছেন, যেখানে তিনি বলেছেন, "আমার আনুষ্ঠানিক গোলের রেকর্ড ভাঙ্গায় রোনালদোকে অভিনন্দন।" কিন্তু হিসেবে বাধ সেধেছেন জোসেফ বিকান, যিনি অস্ট্রিয়া ও চেকোস্লোভাকিয়ার হয়ে ফুটবল খেলেছেন। চেক ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের হিসেব অনুযায়ী অস্ট্রিয়া ও চেকোস্লোভাকিয়ার হয়ে খেলা জোসেফ বিকানের গোলসংখ্যা ৮২১টি। আবার রেক ডট স্পোর্ট ডট সকার নামের পরিসংখ্যানের ওয়েবসাইটের দেয়া তথ্য অনুযায়ী বিকানের গোলসংখ্যা ৮০৫টি। যার মধ্যে র‍্যাপিড ভিয়েনার রিজার্ভ ও অপেশাদার দলের হয়ে আছে ২৭টি গোল। এগুলো আনুষ্ঠানিক আন্তর্জাতিক ফুটবল হিসেবে স্বীকৃত নয়। এই ২৭ গোল বাদ দিলে বিকানের গোলসংখ্যা দাঁড়ায় ৭৫৯টি, পেলের ৭৬৭টি এবং রোনালদোর ৭৭০টি। আরো পড়ুন: যেসব বিষয়ে ভাবনার চেয়েও বেশি মিল আছে মেসি ও রোনালদোর মধ্যে ম্যারাডোনা: ছবিতে একটি অসাধারণ জীবনের গল্প 'তোমার সাথে স্বর্গে ফুটবল খেলবো'- পেলে ও অন্যান্যরা যেভাবে বিদায় জানালেন পেলে রোনালদোকে ধন্যবাদ ও অভিবাদন জানিয়ে একটি ইন্সটাগ্রাম পোস্ট দিয়েছেন বিবৃতিতে রোনালদো বলেন, পেলের কথা শুনে বড় হয়নি এমন কোনো ফুটবলার নেই। পেলে এমন একজন যার মতো রোনালদো হতে চেয়েছেন। রোনালদো এখন পর্যন্ত স্পোর্টিং লিসবনের হয়ে পাঁচটি, ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ১১৮টি, রেয়াল মাদ্রিদের হয়ে ৪৫০টি, জাতীয় দল পর্তুগালের হয়ে ১০২টি এবং বর্তমান ক্লাব জুভেন্টাসের হয়ে ৯৫টি গোল করেছেন এখন পর্যন্ত। আরো যেসব অর্জন: রবিবার রাতে ক্যারিয়ারের ৫৭তম হ্যাটট্রিক করেন জুভেন্টাসের পর্তুগিজ তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। পোর্তোর বিপক্ষে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর ইতালিয়ান ক্লাব ক্যালিয়ারির বিপক্ষে ৩২ মিনিটের মধ্যে তিন গোল দেন রোনালদো। +text: আইসিসি'র বর্ষসেরা একক সব পুরষ্কার কোহলির, সেরা ওয়ানডে দলে মুস্তাফিজ একাধারে আইসিসি বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটার, বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটার এবং স্যার গারফিল্ড সোবার্স বর্ষসেরা ক্রিকেটারের খেতাব জেতেন এই ভারতীয় ক্রিকেটার। কোহলির গত বছরের পরিসংখ্যান ২০১৮ সালে ১৩টি টেস্ট ম্যাচ খেলে ৫৫ গড়ে ১৩২২ রান তুলেছেন কোহলি। যেখানে ৫টি শতক হাঁকিয়েছেন এই ব্যাটসম্যান। আর একদিনের ক্রিকেটে তার শতক সংখ্যা ৬টি, যেখানে ১৪টি ওয়ানডে খেলে ১৩৩.৫৫ গড়ে ১২০২ রান তুলেছেন। এছাড়া ১০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে রান করেছেন ২১১। আরো পড়ুন: জার্সিতে মায়ের নাম নিয়ে কেন খেলছেন ক্রিকেটাররা ৭ বছরের শিশু অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক - কেন মাতামাতি? বিশ্বকাপের আগে ক্রিকেটের সাথে আপোষ নয়: মাশরাফী কোহলি কী বলছেন? বিরাট কোহলি বলেন, "এটা দারুণ এক অনুভূতি। পুরো বছর যে কষ্ট করেছি তার ফল এটি। আমি আমার দলের প্রতি কৃতজ্ঞ। আইসিসি স্বীকৃতি দান করলে সেটা একটা গর্বের ব্যাপার কারণ আমার সাথে অনেক ক্রিকেটার খেলছেন।" তিনি যোগ করেন, "সব ক্যাটাগরিতে এভাবে বাছাই হওয়াটা আমার জন্য বিশেষ কিছু, এটা আমাকে অনুপ্রেরণা জোগাবে, আমার ক্রিকেটের মানে উন্নতি আনার ক্ষেত্রে, কারণ আমি আবারো এই পুরষ্কার পেতে চাইবো।" আইসিসি বর্ষসেরা ওয়ানডে দল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের বর্ষসেরা ওয়ানডে দলে ছয় জন এশিয়ান ক্রিকেটারের নাম রয়েছে, বাকিদের মধ্যে চারজন ইংল্যান্ডের ও একজন নিউজিল্যান্ডের। এই তালিকায় আছেন বাংলাদেশের মুস্তাফিজুর রহমান। বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেট দলে মুস্তাফিজুর রহমান মুস্তাফিজুর রহমান কী বলছেন? এই অর্জন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে তিনি বলেন, ভালো করলে তো ভালো লাগবেই। বিবিসি বাংলাকে মুস্তাফিজুর রহমান আরো বলেন, "বিপিএল খেলছি, এভাবে খেললে আরো ভালো করতে পারবো, ভালো করতে পারলে ভালো লাগে।" ২০১৯ বিশ্বকাপের জন্য নিজের প্রস্তুতি নিয়ে তিনি বলেন তার একমাত্র চাওয়া ফিট থাকা। ২০১৮ সালে মুস্তাফিজুর রহমান ১৮টি ওয়ানডে ম্যাচে ২৯ উইকেট নেন। আইস���সির বর্ষসেরা টেস্ট দলে কারা আছেন? আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের বর্ষসেরা টেস্ট দলে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের তিনজন করে ক্রিকেটার আছেন। এছাড়া অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের একজন করে ক্রিকেটার আছেন। অন্যান্য পুরষ্কার সেরা নারী ক্রিকেটারের পুরষ্কার পেয়েছেন ভারতের স্মৃতি মানধানা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটি টি-টোয়েন্টি ১৭২ রানের ইনিংস রানের ইনিংস খেলা অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ পেয়েছেন বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্সের পুরষ্কার। ক্যালাম ম্যাকলয়েড, একজন স্কটিশ ক্রিকেটার, তিনি সহযোগী দেশগুলোর সেরা ক্রিকেটার পুরষ্কার পেয়েছেন। আর সেরা উদীয়মান ক্রিকেটারের পুরষ্কার পেয়েছেন ভারতের রিশাভ পান্ত। ভালো ব্যবহারের জন্য এবং স্পোর্টসম্যানশিপের জন্য আইসিসি স্পিরিট অফ ক্রিকেট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন কেন উইলিয়ামসন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের ২০১৮ সালের পুরুষ ক্রিকেটের সবকটি পুরষ্কার জিতে নিয়েছেন ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি। +text: কলম্বোর বোমায় বিধ্বস্ত সেন্ট অ্যান্টনি গির্জার বাইরে প্রার্থনা করছেন এক ব্যক্তি গত পাঁচ বছর ধরে ব্যবসার সূত্রে কলম্বোতে থাকেন বাংলাদেশের নাগরিক খালেকুজ্জামান সোহেল। সোমবার দুপুরে শহরের ওয়াল্লাওয়া এলাকায় এক মসজিদে জোহরের নামাজ পড়তে গিয়ে তিনি দেখতে ২০-২৫ জন সশস্ত্র পুলিশ মসজিদটি পাহারা দিচ্ছে। বিবিসিকে তিনি বলেন, "ভেতরে মুসল্লিদের সাথে কথা বলে মনে হলো তারা যতটা না আতঙ্কগ্রস্ত তার চেয়ে বেশি লজ্জিত এবং দু:খিত। তারা যেন বিশ্বাসই করতে পারছেন না যে তাদের সম্প্রদায়ের কেই দেশের ভেতরে এই ধরনের হামলা করতে পারে।" কলম্বোতে মুসলিম সংগঠন ন্যাশনাল শুরা কাউন্সিলের একজন কর্মকর্তা আজমান আব্দুল্লাহ টেলিফোনে বিবিসি বাংলাকে বলেন, আতঙ্কের চেয়ে মুসলিমরা 'ক্ষুব্ধ, ব্যথিত'। " আতঙ্ক যে একবারেই নেই তা বলবো না, নানা ধরণের গুজব শোনা যাচ্ছে, তবে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস আমাদের খ্রিষ্টান ভাইয়েরা বুঝতে পারছেন যে শ্রীলঙ্কার মুসলিমরা কোনোভাবেই তাদের ক্ষতি চায়না।" মি আব্দুল্লাহ জানান, শীর্ষস্থানীয় মুসলিম নেতারা খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে কথা বলেছেন। তিনি জানান, হামলার তীব্র নিন্দা করে মসজিদে মসজিদে ব্যানার ঝোলানো হয়েছে। "আমি যে এ��াকায় থাকি সেখানে সব সম্প্রদায়ের লোক বসবাস করেন। কোনো সমস্যা নেই। তবে শুধু মুসলমান হিসাবে নয়, এদেশের একজন নাগরিক হিসাবে আমি উদ্বিগ্ন। এদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন।" শ্রীলঙ্কায় বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সম্পর্কের ইতিহাস এমনিতেই খুব ভালো না। গত বছর ক্যান্ডি এবং আশপাশের বেশ কিছু শহরে মসজিদ এবং মুসলিম ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কট্টর বৌদ্ধদের হামলার পর সাময়িক জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছিল। ফলে রোববারের হামলার সাথে মুসলিম একটি সংগঠনের সংশ্লিষ্টতার সন্দেহের কথা প্রকাশ হওয়ার পর স্বভাবতই অনেক মুসলিম উৎকণ্ঠায় পড়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতে সেই উদ্বেগ প্রকাশিত হচ্ছে। শ্রীলঙ্কায় নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানাতে ইন্দোনেশিয়ার ছাত্রীদের সমাবেশ দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর গলের সাংবাদিক ফারহান নিজামউদ্দিন বিবিসি বাংলাকে বলেন, মুসলিমরা ক্ষুব্ধ এবং তারা হামলাকারীদের 'সর্বোচ্চ সাজা'র দাবি করছেন। "সোশ্যাল মিডিয়াতে শত শত মুসলিম লিখছেন এই সন্ত্রাসের সাথে ইসলামের শিক্ষার কোনো সম্পর্ক নেই।" সোশ্যাল মিডিয়াতে গলের একজন মুসলিম লিখেছেন, "আমার জন্ম মুসলিম পরিবারে, কিন্তু আমি পড়াশোনা করেছি খ্রিস্টান মিশনারি স্কুলে। ফলে ক্রুশবিদ্ধ যিশুর মূর্তি আমার হৃদয়ের খুব কাছের।" আরেকজন লিখেছেন, "শ্রীলঙ্কায় দুটো গোষ্ঠী - একটি শ্রীলঙ্কান এবং আরেকটি সন্ত্রাসী।" ব্রিটেনে প্রবাসী শ্রীলঙ্কান মুসলিমদের শীর্ষ সংগঠন শ্রীলঙ্কান ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, ব্রিটেনে শ্রীলঙ্কান মুসলিমদের সব সংগঠন রোববারের সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে সোমবার একটি জরুরী বৈঠকে বসছে। সংস্থার সচিব মঞ্জুলা ওসমান বিবিসিকে বলেছেন, কীভাবে এই সন্ত্রাসী হামলা সামাল দিতে প্রবাসী শ্রীলঙ্কান মুসলিমরা সাহায্য করতে পারে সেটাই এখন তাদের প্রধান চিন্তা। গত বছর মার্চে মুসলিম বিরোধী দাঙ্গার সময় কলম্বোর একটি মসজিদের সামনে পুলিশ প্রহরা। "এটা সত্যি যে শ্রীলঙ্কায় বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সম্পর্ক নিয়ে বহুদিন ধরেই উদ্বেগ রয়েছে। তবে রোববারের হামলার সাথে ইসলামি একটি সংগঠনের যোগসাজশ নিয়ে মুসলিমদের মধ্যে বড় কোনো উদ্বেগ তৈরি হয়েছে কবলে আমরা এখনও শুনিনি... আমরা 'ওয়েট অ্যান্ড সি আপ্রোচ' নিচ্ছি।" সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য মুসলিম আশ্বস্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী হারিন ফার্��ান্দো বলেছেন, "হামলাকারীরা দেশের সিংহভাগ মুসলিমের প্রতিনিধিত্ব করেনা। আমি তাদের মুসলিমই বলবো না। এদেশের সাধারণ মুসলিমরা অত্যন্ত সজ্জন এবং অন্য সব সম্প্রদায়ের সাথে তারা সম্প্রীতির সম্পর্ক বজায় রেখে বসবাস করেন।" শ্রীলঙ্কার জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ মুসলিম। শ্রীলঙ্কায় গির্জা ও হোটেলে রোববারের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার সাথে ন্যাশনাল তৌহিদ জামাত (এনটিজে)নামে একটি জঙ্গি ইসলামী গোষ্ঠীর নাম আসার পর শ্রীলঙ্কার মুসলিমরা নূতন করে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন। অনেকেই তাদের ভাবমূর্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। +text: কাঁটাতারের বেড়া থাকার পরও অনুপ্রবেশকারীরা নির্বিঘ্নে সীমান্তে অতিক্রম করছে। গত এক মাসে শুধু ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর সীমান্ত থেকে তিন শতাধিক মানুষকে আটক করেছে বিজিবি। তবে স্থানীয় লোকজন বলছেন, যে সংখ্যায় মানুষ আটক হচ্ছে তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি মানুষ প্রতিদিন বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে। অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঢুকে পড়া বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে বিবিসি জানার চেষ্টা করেছে এদের পরিচয় কী এবং কেন এই অনুপ্রবেশ? গত ৯ই ডিসেম্বর রাতে মহেশপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে ঢোকার সময় ৫৮ বিজিবি সদস্যদের হাতে আটক হয় ১২ জন। এর মধ্যে রবু নামের একজন ছোট ছেলেকে নিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছেন। সপরিবারে থাকতেন ভারতের মুম্বাই শহরে। তার দাবি, ভাল কাজের সুযোগ পেতে বাংলাদেশ থেকে তিনি কয়েক বছর আগে ভারতে গিয়েছিলেন। অবৈধ নাগরিক হিসেবে আটক হয়ে তার স্ত্রী ছ'মাস ধরে এখন ভারতের কারাগারে রয়েছেন। রবু, সীমান্ত অতিক্রম করার সময় আটক। বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: বরিস জনসন কি ব্রেক্সিট প্রধানমন্ত্রী হবেন? ব্রিটেনে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত চার প্রার্থীর জয় আসামে 'মুসলিম বিরোধী' আইন নিয়ে কেন উত্তেজনা "ওখানে ধরা পড়ে যাচ্ছে, বাঙালিগে ধরায় দিচ্ছে, রাখতি চাচ্ছে না। এজন্য মানুষজন ওদেশে থাকতি চায় না কেউ। ওদেশে যে কামাই এদেশেও সেই কামাই। এদেশেও এহন রুজি রোজগার করে খাওয়া যাবে," বলছেন রবু। দুই সন্তান নিয়ে আটক হয়েছেন রাবেয়া হাওলাদার। আট বছর ধরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পুরো পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। তার ছেলের জন্ম হয়েছে ভারতে। বাংলাদেশে নড়াইল জেলার কালিয়াতে তার বাড়ি বলে দাবি করলেন। স্বেচ্ছায় এসেছেন নাকি কেউ আসতে বাধ্য করেছে এ প্রশ্নে রাবেয়া বলে��, "আমি নিজের ইচ্ছায় চলে আসছি। এখন সবকিছু হয়ে গেছে। এখানে বাড়ি করেছি। স্বামীকে বিদেশে পাঠিয়েছি।" বিজিবি'র হাতে আটক ক্ষিতীশ বসু ভারতের নাগরিক। তার কাছে পাওয়া গেল ভারতীয় পরিচয়পত্র। পরিবার নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস ভারতের নদীয়া জেলায়। তার দাবি, ১৯৮৮ সালে তিনি দেশান্তরী হয়েছেন বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ থেকে। এবার অসুস্থ ভাইকে দেখতে এসেছেন অবৈধ পথে। "এখানে আসছি বেড়াতে। বেড়ায়ে আবার চলে যাব। ওখানে আমার পরিবার আছে, ছেলে, মেয়ে আছে।" ক্ষিতীশ বসু, ভারতের নাগরিক। বিজিবি সূত্র জানাচ্ছে, এরা অনুপ্রবেশকারী। ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে মহেশপুর সীমান্ত থেকে ৪৭ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে সীমান্তবর্তী গ্রামে ঘুরে জানা যায়, এরকম প্রতিদিনই বহু মানুষ ঢুকছে যাদের ধরা যাচ্ছে না। সীমান্তবর্তী এলাকার নেপা বাজারে এমন একজনকে পাওয়া গেল যার পরিচয় উদ্ঘাটনে ভিড় জমিয়েছে স্থানীয় গ্রামবাসী। তার দাবি, ভারতে দালালকে ১০ হাজার রুপি দিয়ে তিনি বাংলাদেশে ঢুকেছেন। বাংলাদেশে ঢোকার পর এপারের দালালরা তার মোবাইল ও টাকাপয়সা সব ছিনিয়ে নিয়েছেন বলে তিনি জানালেন। সবুজ নামের ওই তরুণ জানান তিনি ব্যাঙ্গালুরু থেকে এসেছেন। আট-নয় মাস আগে কাজের সন্ধানে তিনি ভারতে গিয়েছিলেন। সীমান্তে এখন দিনে রাতে টহল চলছে। তার মতো আরো অনেকেই ১০ই ডিসেম্বর রাতে সীমান্ত পার হয়েছেন। কিন্তু ঐ দিন বিজিবির হাতে কেউ আটক হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। "আমরা একসাথে ঢুকছি চারজন। অন্য লাইনেও দেখছি ঢুকতে। পঞ্চাশ জনের মতো," বলেন সবুজ। মহেশপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রামের মানুষের কথায় পরিস্থিতি অস্বাভাবিক, এবং আগে কখনোই ভারত থেকে এরকম মানুষকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেখেননি তারা। সীমান্তবর্তী নেপা ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি বাবু শেখ বলেন, প্রতিদিনই মানুষ ঢুকছে। একশ্রেণীর দালাল চক্র এখন খুবই তৎপর বলেও তিনি দাবি করেন। "পঞ্চাশ-একশ প্রত্যেক দিনই আসতেছে। এ এলাকারই লোকজন আছে তারাই শেল্টার দেয়," বলছেন তিনি, "এজন্যই মনে করেন, আমাদের আইনরক্ষকরা ব্যর্থ হয়। কারণ এদের ধরার জন্য বিজিবি বসে থাকে,আর বিজিবিকে পাহারা দেয়ার জন্য থাকে আমাদের লোকজন।" মহেশপুর সীমান্তে অনুপ্রবেশের বিষয়টি শুরু থেকে পর্যবেক্ষণ করছেন স্থানীয় সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী আব্দুর রহমান। বিজিবির হাতে আটক অনেকের সঙ্গেই তার কথা হয়েছে। তিনি বলেন, এমন অনেকেও এসেছে যারা এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ভারতে বসবাস করছিলেন। সীমান্ত পাহারায় বিজিবি। "যারা ধরা পড়ছে তার তিনগুণ বেশি ধরা পড়েনি। তারা যে বর্ণনা দিচ্ছে তাদের নাম ঠিকানায় যা জানা যাচ্ছে তারা বেশিরভাগই মুসলিম। তারা আতঙ্কগ্রস্ত। এবং আমার যেটা মনে হচ্ছে যে ভারতের এনআরসির প্রভাবেই তারা এখন সেখান থেকে বিতাড়িত হয়ে ফিরে আসছে।" "আমরা যেটা খবর পাচ্ছি আমাদের সোর্সের মাধ্যমে সেটা হচ্ছে যে বিএসএফ এই সমস্ত মানুষদের বর্ডার ক্রস করার জন্য সহযোগিতাও করছে।" ভারত থেকে বাংলাদেশে গোপনে জোরপূর্বক ''পুশব্যাক'' চলছে এমন অভিযোগ নিয়ে ভারতের মানবাধিকার কর্মীরাই সোচ্চার হয়েছে বলে খবর বেরিয়েছে। বাংলাদেশে সীমান্তবর্তী অন্যান্য জেলায় অনুপ্রবেশের খবর আসছে। মাঠ পর্যায়ে বিজিবি এসব তথ্য জানালেও আনুষ্ঠানিকভাবে তারা কোনো কথাই বলতে রাজি না। বিজিবি সদরদপ্তরে যোগাযোগ করেও এ নিয়ে কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। স্থানীয় প্রশাসনও বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন। ওদিকে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বিবিসিকে বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। এবং সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত দিয়ে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বহু মানুষ বাংলাদেশে ঢুকে পড়ায় উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। +text: আল-বাগদাদির বিরুদ্ধে অভিযানের প্রথম ফুটেজ প্রকাশ করেছে আমেরিকা ভিডিওর কিছুটা অস্পষ্ট ছবিতে দেখা যাচ্ছে, যে বাড়িতে আল-বাগদাদি লুকিয়েছিলেন সেই বাড়ির চত্বরে ঢোকার পথ পরিষ্কার করতে সৈন্যরা জঙ্গীদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে চালাতে চত্বরের দিকে এগোচ্ছে। আল-বাগদাদি অভিযানের মুখে পালিয়ে একটি সুড়ঙ্গে আশ্রয় নেন এবং পরে তার আত্মঘাতী ভেস্টে বিস্ফোরণ ঘটান যার কারণে তার মৃত্যু ঘটে। আমেরিকান হানার পর ঐ চত্বরটি ধ্বংস করে ফেলা হয়, যেখানে গোলাবারুদ মজুত ছিল। আমেরিকান সেন্ট্রাল কমাণ্ডের প্রধান, জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি বলেন, সেখানে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত করে দেবার পর এলাকাটি দেখে মনে হয়েছে সেটি "বড় বড় গর্তে ভরা একটি গাড়ি পার্ক করার বিশাল খালি জায়গা।" জেনারেল ম্যাকেঞ্জি বলেন, সুড়ঙ্গের ভেতর আল-বাগদাদির সঙ্গে মারা যায় দুটি শিশু। এর আগে খবরে বলা হয়েছিল সুড়ঙ্গের ভেতর আল-বাগদাদি তিনটি শিশুকে নিয়ে ঢুকেছিলেন এবং তারা ���িনজনই বিস্ফোরণে মি: আল-বাগদাদির সঙ্গে মারা গেছে। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: 'আল-বাগদাদি কুকুরের মত মারা গেছে' - ডোনাল্ড ট্রাম্প আল-বাগদাদির অন্তর্বাস চুরি করে ডিএনএ পরীক্ষা বাগদাদির মৃত্যুর পর সিরিয়ায় আইএসের ভবিষ্যত কী? সিরিয়ায় আইএস নেতা আবু বকর আল-বাগদাদির গোপন আস্তানায় আমেরিকান সৈন্যদের অভিযানে নিহত হন আল-বাগদাদি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রোববার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করার সময় আল-বাগদাদির পালানোর পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা দিতে গিয়ে যে বলেছিলেন মৃত্যুর আগে মি. বাগদাদি কাঁদছিলেন, কাতরাচ্ছিলেন- সেটা সঠিক কিনা তা জেনারেল ম্যাকেঞ্জি নিশ্চিত করতে পারেননি। ''বাগদাদি দুটো বাচ্চাকে নিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে একটা সুড়ঙ্গের ভেতরে ঢোকেন এবং তার সঙ্গীসাথীদের চত্বরে ফেলে রেখে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেকে উড়িয়ে দেন। এর থেকেই আপনারা বুঝে নিতে পারেন তিনি কীধরনের মানুষ,'' সংবাদ সম্মেলনে বলেন মি: ট্রাম্প। ''ওখানে কী ঘটেছে, সে ব্যাপারে এটা আমার পর্যবেক্ষণ। তার শেষ কয়েকটা মুহূর্ত ঠিক কেমন ছিল সেটা নিশ্চিত করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। সেই মুহূর্তের কথা আমি বলতে পারব না।'' জেনারেল ম্যাকেঞ্জি বলেন, চারজন মহিলা যারা আত্মঘাতী ভেস্ট পরেছিলেন, তারা এবং আরও একজন পুরুষ ঐ চত্বরে নিহত হয়েছে। তিনি বলেন, আমেরিকান হেলিকপ্টারের ওপর গুলি চালানোর পর সংঘর্ষে তাদের বেশ কিছু যোদ্ধা মারা গেছে। তবে সংখ্যা সম্পর্কে তারা নিশ্চিত নয়। তিনি আরো বলেন: ''আমি স্পষ্ট বলতে চাই এই অভিযান যেহেতু অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তাই বেসামরিক মানুষের হতাহত হবার আশঙ্কা এড়ানোর এবং ওই ভবন ও চত্বরে যেসব শিশু আছে বলে আমরা সন্দেহ করছিলাম তাদের সুরক্ষার জন্য সবরকম প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছে।'' জেনারেল ম্যাকেঞ্জি নিশ্চিত করেছেন যে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে আইএস নেতার পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, মি: আল-বাগদাদি ২০০৪ সালে ইরাকের কারাগারে থাকার সময় থেকে তার ডিএনএ নমুনা আমেরিকানদের ফাইলে সংগ্রহ করা ছিল। তিনি বলেন, আল-বাগদাদির দেহাবশেষ পরিচয় শনাক্ত করার জন্য একটি বিশেষভাবে তৈরি ঘাঁটিতে বিমানযোগে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ''সশস্ত্র সংঘাতে নিহতদের অন্ত্যেষ্টি বিষয়ক আইন অনুযায়ী'' তার মৃত্যুর ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাকে সমুদ্রে দাফন করা হয়। বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারেন: পাকিস্তানে চলন্ত ট্রেনে ভয়াবহ আগুন, ৭৩ জনের মৃত্যু বেলুনের গ্যাস সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ হয় কেন? চাকরি হারানোর ভয় জেঁকে বসেছে গণমাধ্যমে উত্তর সিরিয়ার যে এলাকায় পলাতক আইএস নেতা আবু বকর আল-বাগদাদি আত্মগোপন করেছিলেন সেখানে অভিযান চালিয়ে আমেরিকান সৈন্যরা কীভাবে তাকে হত্যা করেছে তার প্রথম ভিডিও ছবি প্রকাশ করেছে আমেরিকার সেনা বাহিনী। +text: বাংলাদেশে প্রায় ৪০ লক্ষ শ্রমিক পোশাক কারখানায় কাজ করেন ফলে সারাদেশে 'কার্যত লক-ডাউন' পরিস্থিতির কারণে গণ-পরিবহন বন্ধ থাকার পরেও শনিবার হাজার হাজার পোশাক শ্রমিক কর্মস্থলে ফিরেছেন। কিন্তু শনিবার রাতে পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ ১১ই এপ্রিল পর্যন্ত কারখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে শ্রমিকদের বড় অংশই এ সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জেনেছেন আজ কারখানায় গিয়ে। ঢাকা ও গাজীপুরের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে এ নিয়ে দেখা গেছে তীব্র হতাশা। 'তিন ঘণ্টার রাস্তা আসছি দুইদিনে' নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের সাথি সরকার গাজীপুরের একটি রপ্তানি-মুখী পোশাক কারখানায় কাজ করেন। সরকারের দেয়া ১০ দিনের সাধারণ ছুটিতে পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। তবে এরই মধ্যে সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়লেও, যেহেতু শনিবার পর্যন্ত পোশাক কারখানা বন্ধের মেয়াদ বাড়ানো হয়নি, সে কারণে ধারদেনা করে শনিবার দুপুরে কর্মস্থলে ফিরে এসেছেন সাথি। বিবিসিকে তিনি বলছিলেন কত হেনস্থার শিকার হয়ে কর্মস্থলে ফিরেছেন তিনি। সরকার ঘোষিত ছুটি শেষে ফেরিঘাটে ঢাকামুখী মানুষের ভিড়। "বাড়ি থেকে হাইটা আসছি অনেক রাস্তা, তারপর পিকআপে আসছি কয়েক কিলো রাস্তা। তারপর হুন্ডায় (মোটরসাইকেল) আইছি ময়মনসিংহ পর্যন্ত। সেইখানে রাইতে থাইকা সকালে কিছুদূর অটো-রিকসা ও সিএনজি, এবং পরে আবার পিকআপে চইড়া আসছি আমরা।" "তিন ঘণ্টার রাস্তা, দুইদিন ধইরা আসছি। খরচ হইছে একেকজনের জন্যে চার হাজার টাকার মত। এত কষ্ট কইরা আসছি কারণ খোলার দিন না থাকলে যদি চাকরি না থাকে! আবার এখন তো বেতনের টাইম, যদি বেতন না দেয়, সেই ভয়ে।" এত কষ্ট করে কর্মস্থলে পৌঁছে শনিবার রাত পর্যন্তও কিছু জানতে পারেননি তিনি। রোববার সকালে কারখানায় গিয়ে জানতে পারেন আগামী ১১ই এপ্রিল পর্যন্ত কারখানা বন্ধ থাকবে। সাথির মতই কারখানার প্রধান ফটকে টাঙ্গানো নোটিস দেখে�� ছুটি বাড়ার বিষয়ে জানতে পেরেছেন টঙ্গীর পোশাককর্মী চুমকি সুলতানা। এখন কবে কারখানা খুলবে আর কবে বেতন পাবেন তা নিয়ে রীতিমত দুর্ভাবনায় পড়েছেন চুমকি "গেটে নোটিস লেইখা দিছে যে বন্ধ, কিন্তু বেতন কবে দিবে সেই বিষয়ে কিছু বলে নাই। ফ্যাক্টরির গেটে বড় সাহেবরাও (কর্মকর্তা) ছিলেন, তারাও কিছু স্পষ্ট করলেন না। এখন খামু কী, চলমু কেমনে, সেই চিন্তায় আছি।" "বাড়িওয়ালারা এখনও কিছু বলতাসে না, কিন্তু দোকানদাররা দশ টাকার জিনিসও বাকি দিতে চাইতাসে না। হেরা মনে করতাসে বেতন পাইনা, বাকি নিয়া পালাইয়া যামু, তাই বাকি দিতাছে না।" কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে কেন দেরি? বাজারঘাটে সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না একটুও। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে গত ২৬শে মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি চলছে। এর মধ্যে বাস-ট্রেন-লঞ্চসহ সব ধরণের গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য, ওষুধ এবং সংবাদপত্র ছাড়া সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব ধরণের প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। পোশাক মালিকেরা বলছেন, যেহেতু কারখানা বন্ধ করার জন্য সরকারের নির্দেশ ছিল না, সেজন্যই অনেক কারখানা খোলা রাখা হয়েছিল। এমনকি যথাসময়ে অর্থাৎ প্রথম দফায় ঘোষিত সাধারণ ছুটির মেয়াদ শেষে রোববার কারখানা খোলা রাখার ভাবনাই ছিল মালিকদের। কিন্তু একদিকে গণপরিবহন বন্ধের কারণে কর্মস্থলে ফিরতে শ্রমিকদের ভোগান্তি এবং অন্যদিকে সামাজিক দূরত্বের নিয়ম না মেনে হাজার হাজার কর্মী দলবেঁধে ফেরত আসায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ার আশংকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে শনিবার সন্ধ্যার পরে কারখানা বন্ধের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় বিজিএমইএ। বিজিএমইএর একজন সহ-সভাপতি আরশাদ জামাল দিপু বলেছেন, সরকারের নির্দেশনার বাইরে কিছু করেননি তারা। "কিছু কারখানা খোলা ছিল, এদের মধ্যে কেউ পিপিই এবং মাস্কের মত পণ্য বানাচ্ছিল। এর বাইরে কিছু কারখানায় যেমন কোন অর্ডারের ৮৫ শতাংশ বা ৯০ শতাংশ কাজ হয়ে গেছে, দুয়েকদিন কাজ করলেই শেষ হবে অর্ডারের কাজ সেসব কারখানা সীমিত পরিসরে খোলা ছিল।" তিনি বলছেন, বিজিএমইএর এখতিয়ার নেই কারখানা বন্ধ করার এবং সরকারের কারখানা খোলা রাখা সংক্রান্ত নির্দেশনা মেনেই কারখানা খোলা রাখা হয়েছিল। তিনি বলছেন, সরকারের নির্দেশনার বাইরে কিছু করা হয়নি। "কারখানা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত সরক��রেরই ছিল, আমি দোষারোপের জন্য বলছি না, কিন্তু এটাই বাস্তবতা, কারখানা বন্ধ করার 'অ্যাডভাইস'টাও এসেছে সরকারের কাছ থেকেই। সে অনুযায়ীই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজিএমইএ।" শেখ হাসিনা: 'করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আপনার দায়িত্ব ঘরে থাকা' করোনাভাইরাস: সামাজিক দূরত্ব কেন ও কীভাবে বজায় রাখবেন? ব্রিটিশ যুবরাজ চার্লস করোনাভাইরাস-এ আক্রান্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতদের দাফন নিয়ে জটিলতা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে জেলখানায়, বহু দেশ বন্দী ছেড়ে দিচেছ করোনাভাইরাস: সংকট মোকাবেলায় চিকিৎসক-আইসিইউ কতোটা আছে বাংলাদেশে? সরকার কী বলছে? এদিকে, পোশাক কারখানা খোলা বা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিতে কালক্ষেপণের এবং সমন্বয়হীনতার অভিযোগ ওঠার পর, মালিক বা সরকার কেউই এককভাবে এর দায় নিচ্ছে না। সরকার বলছে এই বিপুল পরিমাণ শ্রমিক যে ঢাকা, গাজীপুর এবং নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে বাইরে গেছে সে সম্পর্কে ধারণা করতে পারেননি তারা। যে কারণে শনিবার বিভিন্ন সরকারী সংস্থা এবং গণমাধ্যমের রিপোর্টের পরই আঁচ পাওয়া যায় যে বিপুল পরিমাণ মানুষ ফিরতে শুরু করেছে কর্মস্থলে। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী বলছিলেন, ওই প্রেক্ষাপটে পোশাক কারখানা বন্ধের ব্যাপারে শনিবার সরকার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে। "আমাদের কাছে রিপোর্ট ছিল যে সর্বোচ্চ দুই থেকে তিন শতাংশ শ্রমিক শহরের বাইরে চলে গেছে। কারণ সে রকমই নির্দেশনা দেয়া ছিল যে তারা যেন যেখানে আছে সেখানেই থাকে, মানে কর্মস্থলের কাছেই যেখানে তারা বাস করছে। কিন্তু শনিবার সকাল থেকে বিভিন্ন জায়গা থেকে আমরা ফোন পেতে শুরু করি।" "আমাদের জানানো হয় মিছিলের মত শ্রমিকেরা আসছে, তাদের ঠেকানো যাচ্ছে না। তারা বলছে না পৌঁছালে তাদের চাকরি চলে যাবে, বা বেতন পাবে না। তখন আমাদের নতুন করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।" তবে মন্ত্রী সমন্বয়হীনতার অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করে বলেছেন, পোশাক কারখানার শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশের শীর্ষ রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক খাত করোনাভাইরাসের কারণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকেরা। একই সঙ্গে চাকরি হারানোর শঙ্কায় আছে বহু শ্রমিক। এদিকে, বাংলাদেশে সাধারণ ছুটির মেয়াদ ১৪ই এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ছে। এর মধ্যে আগে থেকেই ১১ই এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ছিল। প্রথম দফায় ২৬শে মার্চ থেকে ৪ঠা এপ্রিল পর্যন্ত দশদিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে বাংলাদেশের সরকার। এরপর ৩১শে মার্চ জানানো হয় ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে আরো পাঁচদিন, অর্থাৎ ৯ই এপ্রিল পর্যন্ত। আর ১০ ও ১১ই এপ্রিল শুক্র ও শনিবার হওয়ায় ১২ তারিখ থেকে কর্ম-দিবস শুরু হবার কথা ছিল। বাংলাদেশে সরকার নির্দেশিত সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হলেও, তৈরি পোশাক কারখানা খোলার নির্ধারিত তারিখ ছিল আজ পাঁচই এপ্রিল। +text: ধর্মকে ঘিরে যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে এবার তিক্ত প্রচারণা চলছে। প্রচারণার জন্য গণমাধ্যমের সামনে সবকিছু বেশ সতর্কভাবে পরিকল্পিত ছিল। হঠাৎ করে একজন চিৎকার করে বলতে লাগলেন, "আপনি আমাদের ওই লোকটার হাত থেকে বাঁচিয়েছেন"। বিরোধী নেতা জেরেমি করবিনের কথা বলছিলেন লোকটি। এটা পরিষ্কার যে বরিস জনসন ইহুদিদের ভোট আকর্ষণ করতে চাইছেন আর সেজন্যেই ইহুদিদের সাথে জনসংযোগ। তবে ব্রিটেনে নির্বাচনের প্রচারণার অংশ হিসেবে কোন প্রধানমন্ত্রী ধর্মকে সামনে রেখে এগুবেন এটা গত কয়েক বছর আগেও চিন্তার বাইরে ছিল। যুক্তরাজ্যে এবারের নির্বাচনে ব্রেক্সিট নিয়ে এমনিতেই ব্যাপকভাবে বিভেদ লক্ষণীয়। কিন্তু প্রচারণা চলাকালীন যে বিষয়গুলো বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে তা হল ইসলাম ও ইহুদি বিদ্বেষ, হিন্দু ভোটার আর বর্ণবাদ। ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের মালিকানাধীন একটি বেকারিতে বরিস জনসন। যে কারণে ইহুদিদের ভোটের জন্য চেষ্টা যুক্তরাজ্যে মোট জনগোষ্ঠীর মধ্যে ইহুদিদের সংখ্যা মোটে ০.৫%। তাদের ভোটে বড়সড় কোন বিপর্যয় ঘটে যাবে তেমন নয়। বরিস জনসন তাদের জন্য প্রচারণায় সময় ব্যয় করবেন সেটি ভাবার বোধহয় আপাতদৃষ্টিতে কোন কারণ নেই। কিন্তু এখানে মুল বিষয় হল বিরোধী লেবার পার্টির পরিচয় সাধারণত বর্ণবাদ বিরোধী হিসেবে। তারা সবসময় সংখ্যালঘু নানা গোষ্ঠীর সমর্থন পেয়েছেন। কিন্তু ২০১৫ সালে যখন জেরেমি করবিন দলের নেতা হলেন তাকে বলা হয়েছে তিনি লেবার পার্টির নেতাদের মধ্যে এখনো পর্যন্ত সবচাইতে বাম ঘেঁষা। আরো পড়ুন: বরিস জনসন: ব্রিটেনের বিতর্কিত নতুন প্রধানমন্ত্রী ব্রিটিশ রাজনীতি: আদালতে কেন হারলেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন লেবার পার্টি সব সময় ফিলিস্তিনিদের আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছে। লেবার পার্টি বড় কর্পোরেট বাণিজ্যের বিরুদ্ধেও কথা বলে। কিন্তু মি. করবিন নেতৃত্বে আসার পর সেটির ���াত্রা অনেক বেড়ে গেছে বলে মনে করা হয়। তিনি ইহুদি বিদ্বেষী এমন মনে করেন অনেকেই। ইসরাইলের সমালোচনা ইহুদি বিদ্বেষে রূপ নিচ্ছে কিনা, সে প্রসঙ্গ এর আগেও আলোচিত হয়েছে। ইহুদিরা ব্যাংক ও আর্থিক লেনদেনের জন্য বিখ্যাত। এখন কর্পোরেট বাণিজ্যের বিরোধিতাও কি ইহুদিদের বিরোধিতা কিনা সেটাও বলা হচ্ছে। এসব কারণে সাম্প্রতিক সময় যুক্তরাজ্যের ইহুদি জনগোষ্ঠীর সমর্থন হারিয়েছে লেবার পার্টি। লেবার পার্টিতে ইহুদি বিদ্বেষ বিরোধী প্রতিবাদ। জেরেমি করবিন যদিও বারবার ইহুদি বিদ্বেষকে সমালোচনা করেছেন। ইহুদি বিদ্বেষ বিষয়ক অভিযোগ ওঠার পর তা তদন্তে তার দল ধীরগতিতে কাজ করেছে তেমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেরেমি করবিন ক্ষমাও চেয়েছেন। আরো পড়ুন: টেরিজা মে-র ব্রেক্সিট চুক্তি এভাবে হারলো কেন? জেরেমি করবিনের কাহিনি: লেবার নেতার পরিচিতি ইহুদিদের ভোট না পেলে তার উপর লেবার পার্টির জয়-পরাজয় যে খুব বেশি নির্ভর করবে তা হয়ত নয়। কিন্তু ইহুদি বিদ্বেষী তকমা দলের ইমেজের জন্য ইতিমধ্যেই বেশ ক্ষতির কারণ হয়েছে। যা অন্যদের ভোটকেও হয়ত প্রভাবিত করতে পারে। সেটিই বোধহয় কাজে লাগাতে চাইছেন বরিস জনসন। ইসলাম বিদ্বেষ যখন ইস্যু জেরেমি করবিন যেমন ইহুদি বিদ্বেষী হিসেবে অভিযুক্ত হয়েছেন তেমনি তার প্রধান প্রতিপক্ষ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের বিরুদ্ধে সমালোচনা হচ্ছে ইসলাম বিদ্বেষের বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যাওয়ার। মাত্র গত মাসেই ব্রিটেনের মুসলিম কাউন্সিল বরিস জনসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে যে তিনি, 'দেশটিতে যে ইসলাম বিদ্বেষ রয়েছে সেটি পুরোপুরি নাকচ করে দিচ্ছেন এবং সে ব্যাপারে শঠতার আশ্রয় নিচ্ছেন'। জেরেমি করবিন ইহুদি বিদ্বেষী বলে মনে করেন অনেকেই। তাদের অভিযোগ বরিস জনসনের দল 'ইসলাম বিদ্বেষকে চলতে দিয়েছে, এটিকে সমাজে বাড়তে সাহায্য করেছে এবং এমন বর্ণবাদ নির্মূল করার জন্য সঠিক পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে'। এসব সমালোচনা মি. জনসন নিজেও এক অর্থে উস্কে দিয়েছেন তার কিছু মন্তব্যের মাধ্যমে। এক প্রবন্ধে তিনি বোরকা সম্পর্কে সমালোচনা করেছিলেন। সেখানে তিনি লিখেছিলেন বোরকা 'নিপীড়নমূলক' পোশাক। তিনি বোরকা সম্পর্কে কটূক্তি করে আরও বলেছেন, যে নারীরা বোরকা পরেন তাদের দেখতে 'ব্যাংক ডাকাত' বলে মনে হয়। এসব মন্তব্যের জন্য যদিও মি. জনসন ক্ষমা চেয়েছেন। তার দলের বিরুদ্ধে ই��লাম বিদ্বেষ সম্পর্কিত যে অভিযোগ, বড়দিনের আগেই তার তদন্ত হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে যুক্তরাজ্যের মুসলিমদের মধ্যে কনজারভেটিভ পার্টির পক্ষে সমর্থন তেমন একটা নেই। ২০১৭ সালের নির্বাচনে মুসলিমদের ৮৭ শতাংশই লেবার পার্টিকে ভোট দিয়েছে। ব্রিটেনে মুসলিম জনগোষ্ঠী মোট জনসংখ্যার ৫ শতাংশ। প্রচারণায় ইসলাম বিদ্বেষ ইস্যুকে টেনে কনজারভেটিভ পার্টিকে কোণঠাসা করার চেষ্টা বেশ লক্ষণীয়। ব্রিটেনের মুসলিম কাউন্সিলের অভিযোগ বরিস জনসনের দল ইসলাম বিদ্বেষ চলতে দিয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপে প্রচারণা বাজফিড ওয়েবসাইটে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লন্ডনভিত্তিক একটি লবি গ্রুপ মুসলিম পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কমিটি মুসলিমদের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠাচ্ছে। যাতে বলা হচ্ছে কনজারভেটিভ প্রার্থীদের বিপক্ষে ভোট দিতে। এই গ্রুপটির অভিযোগ কনজারভেটিভ প্রার্থীরা 'ইসলাম বিদ্বেষ উস্কে দিতে ভূমিকা রেখেছে, তারা ইসরায়েলের সমর্থক অথবা কাশ্মীরে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের যে সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড সেটির সমর্থক'। হোয়াটসঅ্যাপে এমন বার্তাকে বিভেদ সৃষ্টিকারী ও নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন বলে সমালোচনা করা হচ্ছে। মুসলিম পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কমিটি বলছে, কনজারভেটিভ প্রার্থীদের ভোটের পুরনো ইতিহাস ঘাঁটলেই তাদের অভিযোগের সত্যতা যাচাই হবে। হিন্দুরা এবার কাকে ভোট দেবে? প্রার্থী বেছে নেয়ার ব্যাপারে ইহুদি ও মুসলিম ভোটাররা খুব বেশি যে তাদের মন পরিবর্তন করবেন তা মনে হচ্ছে না। কিন্তু মনে হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা তাদের মত পরিবর্তন করছেন। তারাও অন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মতো লেবার পার্টিকেই মূলত সমর্থন দিয়ে এসেছেন। বিজেপির সাথে সম্পৃক্ত একটি গোষ্ঠী কনজারভেটিভ দলের সঙ্গে কাজ করছে। কিন্তু সেই সমর্থন কিছুটা কনজারভেটিভদের প্রতি ঝুঁকে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। ব্রিটেনে দশ লাখের মতো হিন্দু জনগোষ্ঠী রয়েছে। ২০১০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কনজারভেটিভদের পক্ষে হিন্দুদের ভোট বেড়েছে দশ শতাংশ। সেটি এবার আরও বাড়বে বলে ধারনা করা হচ্ছে। যার কারণ কাশ্মীর ইস্যু। ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সমর্থক গোষ্ঠী 'দা ওভারসিজ ফ্রেন্ডস' সম্প্রতি টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছে, যুক্তরাজ্যের হিন্দুরা যাতে লেবার পার্টকে ভোট না দেয় সেজন্য তারা কনজারভেটিভ প্রার্থীদের সাথে কাজ করছেন। কাশ্মীরে বিজেপি সরকারের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেছে লেবার পার্টি। সেটিই এখানে কারণ। এই বিষয়টিও প্রচারণার অংশ হচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে। লেবার পার্টি 'পাকিস্তানের প্রচারণার অন্ধ সমর্থক' এমন একটি বার্তা যুক্তরাজ্যে হিন্দুদের কাছে ছড়ানো হচ্ছে। যা কিনা অন্য একটি বিষয়কে ঘিরে পুরনো বার্তা। এসব বার্তায় বিশ্বাস না করার জন্য হিন্দুদের প্রতি আহবান জানাচ্ছে লেবার পার্টির প্রার্থীরা এবং তারাও কাশ্মীর প্রসঙ্গে মরিয়া হয়ে হিন্দুদের মন পরিবর্তনের চেষ্টা করছে। সব মিলিয়ে ধর্মকে ঘিরে যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে এবার তিক্ত প্রচারণা চলছে। ভোটের মাঠে উত্তেজনা অন্যান্য খবর: 'বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন থামেনি বলেই এই বিল' রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার: পাথরের মতো বসে ছিলেন সু চি মার্কিন সংসদে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিচার পরিকল্পনা প্রকাশ নির্বাচনের প্রচারণার সময় গত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের মালিকানাধীন একটি বেকারিতে থেমেছিলেন। +text: ফেসবুকে রাজনৈতিক ইস্যুতে কথা বলা এড়িয়ে যাচ্ছেন অনেকে। এ জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কিছু প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার। এসব প্রযুক্তির মধ্যে হার্ডওয়্যার বা সফটওয়্যার দুটোই থাকতে পারে এবং খুব শিগগিরই এগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে নজরদারি করা হবে বলে জানান তিনি। কিভাবে নজরদারি করা হবে? এসব প্রযুক্তির মাধ্যমে কিভাবে ফেসবুক কিংবা ইউটিউবের কনটেন্টের ওপর নজর রাখা যায়? এ বিষয়ে বিবিসি বাংলা জানতে চেয়েছিল আয়ারল্যান্ডে সোশাল মিডিয়া গবেষক এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড হেলথ গ্রুপের তথ্য প্রযুক্তিবিদ ড. নাসিম মাহমুদের কাছে। আরো পড়ুন: তারকা ক্রিকেটারদের ফেসবুক পাতা চালানো কতটা কঠিন? ফেসবুক, ইউটিউব নজরদারির প্রযুক্তি আনছে বাংলাদেশ ফেসবুক, অনলাইনে কেনাকাটা ও ব্যক্তিগত তথ্য- সবই কি জেনে যাচ্ছে বিক্রেতারা? তিনি জানান, বাংলাদেশ সরকার চাইলে দুইভাবে এসব কন্টেন্টের উপর নজর রাখতে পারবে। প্রথমত, ফেসবুক বা গুগলের মতো বড় প্রতিষ্ঠানের কাছে সরকার তথ্য চাওয়ার মাধ্যমে। অনেক দেশই তাদের প্রয়োজনে ফেসবুক বা গুগলের কাছে তথ্য চেয়ে থাকে। দ্বিতীয়ত, পরোক্ষভাবে নজরদারি করা, যেমন বিশেষজ্ঞ বা পারদর্শী কারও মাধ্যমে পুরো ফেসবুক নেটওয়ার্ককে মনিটর করা। এ ধরণের কাজের জন্য আলাদা কোম্পানি আছে। যারা আপনার হয়ে ফেসবুক বা গুগলের ওপর নজরদারি করতে পারে। যদি ক্ষতিকর কোন শব্দ বা মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে চলে যায় তখন এই কোম্পানিগুলো আপনাকে সে বিষয়ে দ্রুত জানাতে পারবে। ফেসবুক, ইউটিউবের ওপর নজরদারি করার কথা জানিয়েছে সরকার। তবে তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী যেটা বলছেন, সরকার কিছু প্রযুক্তি আনতে যাচ্ছে, যেটা থেকে জানা যাবে যে, কোথায়, কী ধরণের ভিডিও আপলোড হয়েছে, কারা এসবের পেছনে জড়িত। সুনির্দিষ্ট ভাবে এই ধরণের নজরদারি করার কোন প্রযুক্তি নেই বলে জানান ড. নাসিম মাহমুদ। তার মতে, এ ব্যাপারে পারদর্শী কাউকে নিয়োগ দেয়া যায়, যার কাজ হবে প্রতিনিয়ত ওই মাধ্যমগুলোকে মনিটর করা। তবে মানুষের কাজটি এখন একটি সফটওয়্যার দিয়েই করা সম্ভব। সফটওয়্যারে যদি নির্দিষ্ট কোন শব্দ বাছাই করে দেয়া হয়, তাহলে কেউ সেই শব্দ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে সফটওয়্যারটি বিস্তারিত তথ্যসহ আপনাকে একটা ইমেইল পাঠিয়ে দেবে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট শব্দের সাথে নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তির নাম এসেছে কিনা এবং সেটা ইতিবাচক অথবা নেতিবাচক কিনা এ ধরণের কাজগুলো সেই সফটওয়্যারের মাধ্যমে করা যায়। কেউ যদি অন্য কোন দেশে বসেও এমন কাজ করে থাকে তাহলেও সেই সফটওয়্যারটি দিয়ে ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পরিচয় খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে। অনেকেই তাদের পেশাগত প্রয়োজনে এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকেন। আরও পড়তে পারেন: বেনামে ফেসবুক আইডি তৈরির কথা বলিনি: এইচ টি ইমাম নারীদের ফেসবুক গ্রুপ: যেখানে একে অপরের সহায়ক 'আমরা প্রধানমন্ত্রীর লোক, আমার বাবা এমপি' - বাংলাদেশে ফেসবুক সরগরম বিতর্কিত তথ্যগুলো কি মুছে দেয়া যাবে? ওই সফটওয়্যার ক্ষতিকর কন্টেন্ট সনাক্ত করতে পারলেও সেগুলো আর মুছে দিতে পারে না। ড. নাসিম বলেন, "যেটা একবার পোস্ট করা হয়ে যায় সেটা চাইলেই ডিলিট করা সম্ভব না।" "সেক্ষেত্রে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশ সরকার যেটা করতে পারেন সেটা হল, তারা সে ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য চাইতে পারেন।" বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবছরই ফেসবুকের কাছে তাদের ব্যবহারকারীদের তালিকা দিয়ে বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়। এ বছর হয়তো একশ' মানুষের তথ্য চেয়েছে, সামনের বছরে হয়তো এক হাজার মানুষের তথ্য চাইতে পারবে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে? এখানে কি তাহলে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করা বা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা থাকছে? বিবিসির এমন প্রশ্নের জবাবে ড. নাসিম বলেন, "এটি ব্যাপকভাবে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করবে।" "আপনি যদি আগে থেকেই জানেন যে আপনি মুখ খুললে, আপনাকে খুঁজে বের করে জিজ্ঞেসাবাদ করা সম্ভব। তাহলে এই মুখ খোলার হার অনেক কমে যাবে।" ড. নাসিমের মতে, যারা মূলধারার গণমাধ্যমের কাছে তাদের মনের কথাগুলো বলার সুযোগ পান না তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দ্বারস্থ হন। এখন যদি এই সামাজিক মাধ্যমের ওপর সরকার রীতিমত ঘোষণা দিয়ে সফটওয়্যারের সাহায্যে, বিশেষায়িত হার্ডওয়্যার দিয়ে বা শক্তিশালী কোন সার্ভার ব্যবহার করে সবার নেটওয়ার্কে প্রবেশের চেষ্টা করে তাহলে সাধারণ মানুষ কথা বলা থেকে বিরত থাকবে বলে জানান ড. নাসিম মাহমুদ। ফেসবুক বা ইউটিউবের মত সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত যে কোন কনটেন্ট যদি বাংলাদেশ সরকারের কাছে দেশের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে হয়, তাহলে সরকার চাইলেই সেগুলো প্রতিরোধ করতে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। +text: বাংলাদেশে এখন বহুল প্রচলিত মাদক ইয়াবা। মাসে গড়ে এক লক্ষ টাকার মতো আয় করতেন তিনি। কিন্তু এই আয়ের বড় একটি অংশ চলে যেত ইয়াবা সেবনের পেছনে। "দেখা যেত আমার অ্যাভারেজ (গড়ে) ২০০০ টাকা খরচ হচ্ছে প্রতিদিন। আমার ইনকামের ম্যাক্সিমাম অংশ ড্রাগে ইউজ করে ফেলতাম," বলছিলেন আনোয়ার হোসেন। এ পর্যায়ে মাসে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা ইয়াবা সেবনের জন্য খরচ হতো তাঁর। সেই চক্করে পড়ে প্রায় সবই হারিয়েছেন তিনি। কিভাবে ইয়াবার প্রতি আসক্তি তৈরি হয়েছিল, সেই বর্ণনাই আমাকে দিয়েছিলেন আনোয়ার হোসেন। দীর্ঘসময় চিকিৎসা নেবার পর এখন তিনি নিজেকে মাদক মুক্ত দাবি করছেন। ইয়াবায় আসক্তির এমন অজস্র কাহিনী এখন পাওয়া যায়। বিবিসি বাংলায় আরও যেসব খবর: যে কারণে এই আইরিশ গায়িকা মুসলমান হলেন বয়স বাড়লে শরীরের মধ্যে যে নয়টি পরিবর্তন ঘটে মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন খুব জরুরী বিষয়। ঢাকা শহরে বেসরকারি উদ্যোগে এ ধরণের প্রায় শতাধিক চিকিৎসা কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। তেমন একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রের নাম ক্রিয়া। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার তরুণ কান্তি ঘোষ জানিয়েছেন, পরিস্থিতির কোন উন্নতি তিনি দেখছেন না। বাংলাদেশে মাদকের বিস্তার যে প্রকট আকার ধারণ করেছে, তা নিয়ে কারো মধ্যে কোন বিতর্ক নেই। মাদক বিরোধী অভিযানে ২০০'র বেশি নিহত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় মাদকের বিস্তার নিয়ে গবেষণা করেছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইমদাদুল ইসলাম। তাঁর বর্ণনা অনুযায়ী বাংলাদেশে মাদকের ক্ষেত্রে এখন 'ইয়াবা যুগ' চলছে, কারণ বাংলাদেশে মাদকাসক্তদের অধিকাংশই ইয়াবাসেবী। মাদকের বাজার অধ্যাপক ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে একটা সময় মাদক হিসেবে ফেনসিডিল বহুল প্রচলিত থাকলেও ১৯৯৯ সাল থেকে ইয়াবা ধীরে ধীরে ওই জায়গা দখল করে নেয়। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে বাংলাদেশে যেখানে ১,২৯,০০০ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছিল, সেখানে ২০১৭ সালে চার কোটি ইয়াবা আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। "সাধারণত ড্রাগস যা ধরা পড়ে, প্রকৃত চালানটা হয়তো তার চেয়ে দশগুণ বেশি। নাইনটি পার্সেন্ট দৃষ্টির আড়ালে চলে যায়। সে হিসেবে বাংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে ৪০ কোটি পিস ইয়াবা বাজারে ঢুকছে," বলছিলেন অধ্যাপক ইসলাম। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন ইয়াবাসেবীর সংখ্যা প্রায় ৪০ লক্ষ। প্রতিদিন একজন ইয়াবাসেবীর ১০-১২টি ট্যাবলেট প্রয়োজন হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। বাংলাদেশে প্রতিদিনই ইয়াবা আটক করা হচ্ছে। একটি ইয়াবার দাম ২০০ টাকা হলে এ থেকে মাদকটির বাজার সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যায় বলে মনে করেন তিনি। বাংলাদেশে চলতি বছরের প্রথম আট মাসেই প্রায় সাড়ে চার কোটি ইয়াবা আটক করেছে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো। বাংলাদেশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বলছে, মাদকাসক্তদের মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ইয়াবা ব্যবহার করছে। সেই হিসেবে বাংলাদেশে শুধু ইয়াবার বাজার প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা বলে উল্লেখ করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ গত চার মাস ধরে চলছে মাদকবিরোধী অভিযান। এখন পর্যন্ত এ অভিযানে মৃতের সংখ্যা দুইশো ছাড়িয়েছে। অভিযান মাদকবিরোধী অভিযান নিয়ে এরই মধ্যে নানা প্রশ্ন উঠেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞানের শিক্ষক এবং বিশ্লেষক খন্দকার ফারজানা রহমান মনে করেন, এ ধরণের অভিযান কতটা কাজে লাগবে তা নিয়ে তাঁর সংশয় আছে। "আপনি তাদের ধরে শাস্তি দিচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু নতুন ড্রাগ অ্যাবিউজার তৈরি হবে না সেটাও আপনাকে এনশিওর করতে হবে," বলছিলেন ফারজানা রহমান। তিনি বলেন বাংলাদেশের সীমান্তে ২৫০টি পয়েন্ট আছে যেগুলোর ভেতর দিয়ে মাদক বাংলাদেশে আসে। তিনি মনে করেন শুধু 'চুনোপিুটিদের' ধরে সমস্যার কোন সমাধান হবে না। খন্দকার ফারজানা রহমান। সম্প্রতি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর তাদের মাদক কারবারির তালিকা হালনাগাদ করেছে। পেছনে কারা? ওই তালিকায় কক্সবাজার এলাকায় জনপ্রতিনিধিসহ ৭০ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে - অনেকেই নাম এসেছে যারা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী বলে পরিচিতি রয়েছে। খন্দকার ফারজানা রহমান বলছেন, অনেক ক্ষেত্রেই যে মাদক কারবারের পেছনে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা থাকে সেটি এখন আর কারো অজানা নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি যেমন বড় হয়েছে তেমনি মানুষের ক্রয় ক্ষমতাও বেড়েছে। ফলে মাদক বিক্রির পরিধিও বেড়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ও বিশ্লেষক সায়মা হক বিদিশা বলেছেন, মাদক ব্যবসা দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এর কয়েকটি কারণ তুলে ধরেন তিনি। প্রথমত; মাদক ব্যবসা অবৈধ হওয়ার কারণে যারা এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে তারা দেশের বাইরে টাকা পাচার করে দিতে চায়। সায়মা হক বিদিশা দ্বিতীয়ত; অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন থাকায় এ খাত থেকে অর্জিত অর্থ অন্য জায়গায় বিনিয়োগ হয় না। তৃতীয়ত; যে ব্যক্তি মাদকের জন্য টাকা ব্যয় করছেন, তিনি যদি মাদকাসক্ত না হতেন তাহলে সে টাকা অর্থনীতির অন্য খাতে ব্যয় হতো। চতুর্থত; মাদকের বিস্তার লাভ করলে অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যায়। ফলে সেটি ব্যবসা খাতে বিনিয়োগের পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করে। এছাড়া মাদকের সাথে সংশ্লিষ্ট নানাবিধ রোগের কারণে স্বাস্থ্যখাতে প্রচুর অর্থ খরচ হচ্ছে। বিশ্লেষকর বলছেন, মাদকের বিস্তারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে, সেই একই অবস্থা মোকাবেলা করছে পৃথিবীর অনেক দেশ। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এবং বিশ্লেষক ইমদাদুল ইসলাম বলছেন, দেশের ভেতরে অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হলে ক্ষুদে মাদক কারবারিরা অর্থ উপার্জনের জন্য আর ওই পথে যাবে না। এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, মাদকের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে। যেই জড়িত থাকুক না কেন, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না - এমন কথা বলেন কর্মকর্তারা। একই সাথে যেসব জায়গা দিয়ে দেশের ভেতরে মাদক আসে, সীমান্তের সেসব জায়গায় নজরদারীও বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যাই বলুক না কেন, বাস্তবে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ না হলে পরিস্থিতির কতটা উন্নতি হবে সেটি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন বিশ্লেষকরা। বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারেন: আওয়ামী লীগ নতুন বিরোধী জোটকে কি বিবেচনায় নিচ্ছে? 'জামায়াত হারিয়ে যায় নি, পরিস্থিতি বুঝে এগুচ্ছে' একসময় গাড়ির ব্যবসা করতেন আনোয়ার হোসেন (এটি তাঁর ছদ্মনাম)। আয়-রোজগারও ভালোই ছিল। +text: পাকিস্তানের কাশ্মীরে বিধ্বস্ত ভারতীয় জেট বিমান মঙ্গলবার পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ভারতীয় বিমান হামলার জেরে গতকাল বুধবার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গুলিতে অন্তত একটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয় বলে পাকিস্তান দাবি করেছে। ভারতীয় বিমানবাহিনীর একজন পাইলট এখন পাকিস্তানীদের জিম্মায়, যা নিয়ে ভারতে জনমনে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সংঘর্ষ বাদ দিয়ে মীমাংসায় বসার জন্য ভারতের প্রতি নতুন করে আহ্বান জানিয়েছেন। ভারত সাড়া দিবে ইমরানের প্রস্তাবে? ইমরান খানের আলোচনার জন্য যে প্রস্তাব তুলেছেন তাতে ভারতের সায় দেওয়ার সম্ভাবনা কতটা রয়েছে - জানতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতির অধ্যাপক ড. আলী রিয়াজ বলেন, ভারতের প্রত্যক্ষভাবে এখনই এই মুহূর্তে সায় দেয়ার সম্ভাবনা না থাকলেও শেষপর্যন্ত এটা আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়েই সমাপ্তি টানতে হবে। কারণ দুপক্ষের কারো জন্যেই এই যুদ্ধ ইতিবাচক নয়। তার ওপর গোটা দক্ষিণ এশিয়া-জুড়ে ভারত ও পাকিস্তানের ভেতরেও যুদ্ধের বিরুদ্ধে যে মনোভাব প্রকাশিত হয়েছে তাতে কোন পক্ষ খুব বেশি অগ্রসর হতে পারবে না, বলছেন মি. রিয়াজ। "এর চেয়েও বড় বাস্তব বিষয় হলো ভারতের যে পাইলট পাকিস্তানে ইতোমধ্যে আটক আছে তাকে ছাড়াবার ব্যবস্থা করতে হলে আলোচনার পথ খুঁজতে হবে তাদের। সে আলাপ আলোচনা কিভাবে হবে - সেটা আমরা জানিনা।" শুধু পাকিস্তানের প্রস্তাবের কারণে না, বাস্তব পরিস্থিতির কারণেই আলাপ-আলোচনার পথ খুঁজে বের করে এর সমাধান করতে হবে বলে তিনি মনে করছেন। ভারতকে যে বার্তা দিলেন ইমরান খান ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার যে প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে ইমরান খান বলেছেন, আমি ভারতের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যেন শুভ বুদ্ধি�� উদয় হয়। ইমরানের সতর্কবাণী কতটা গ্রহণযোগ্য? এ অবস্থা চলতে থাকলে পরিস্থিতি তার বা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে মি. খান সতর্ক করেছেন। পরিস্থিতি যে কোনও সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে -পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর এই সাবধান বাণী কতটা গ্রহণযোগ্য? অধ্যাপক রিয়াজ বলছেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী যে হুঁশিয়ারির কথা বলেছেন সেটা এক অর্থে গুরুত্ব দয়েই বিবেচনা করতে হবে। "কারণ এই যুদ্ধাবস্থার যে প্রধান নির্ণায়ক সেটা রাজনৈতিক, দুপক্ষেই রাজনীতিটা প্রধান।" নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, তিনি মাতৃভূমিকে সব ধরণের অপমান এবং হুমকি থেকে রক্ষা করবেন। আলী রিয়াজের মতে, "বিষয়টির একটি দিক হলো- ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি - সেখানে একধরনের রাজনীতিকরণ হচ্ছে ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতৃত্বে।" "সামনে নির্বাচন - সমস্ত পরিস্থিতি মিলে তাদের মধ্যে উগ্র জাতীয়তাবাদী চিন্তা। সেটার কারণে পরিস্থিতি শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে ঠেকে সেটা নিয়ে ইমরান খানের আশঙ্কা ঠিক উড়িয়ে দেয়া যায় না," বলেন মি. রিয়াজ। "বিপরীত দিকে পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও একধরনের রাজনৈতিক বিবেচনা আছে। ইমরান খান যেহেতু নতুন প্রধানমন্ত্রী, নতুন এই অর্থে যে পাকিস্তানে অতীতে যেসমস্ত দল ক্ষমতায় ছিল তাদের প্রতিনিধিত্ব তিনি করেন না।" "অভিযোগ বা ধারণা রয়েছে যে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে তার একধরনের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। সুতরাং তার পক্ষে আসলে সেনাবাহিনীর যে চাপ - এক ধরনের অবস্থান বজায় রাখার, সে কারণেও হয়তো ইমরান খান এ সমস্ত কথা বলছেন,"-বিশ্লেষণ অধ্যাপক রিয়াজের। পুলাওয়ামার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত বিপজ্জনক চেহারা নিয়েছে। +text: কোভ্যাক্স ব্যবহার করা ১৯০টি দেশে ভারতের এই পদক্ষেপের ফলে প্রভাব পড়তে পারে। তারা জানিয়েছে, ভারতে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় আসন্ন দিনগুলোতে স্থানীয়ভাবে টিকার চাহিদা বাড়বে বলে ধারণা করছে কর্তৃপক্ষ। তাই ভারতের অভ্যন্তরে বেশি পরিমাণ টিকা সরবরাহ করার প্রয়োজন হতে পারে। টিকা রপ্তানিতে, কর্তৃপক্ষের ভাষ্যমতে, 'সাময়িক সঙ্কোচন' এর ফলে এপ্রিলের শেষদিক পর্যন্ত টিকার যোগান প্রভাবিত হতে পারে। কোভ্যাক্স পরিকল্পনার অধীনে থাকা, অর্থাৎ কোভ্যাক্স ব্যবহার করা ১৯০টি দেশে ভারতের এই প���ক্ষেপের ফলে প্রভাব পড়তে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বে পরিচালিত এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য সব দেশের জন্য ন্যায্যভাবে টিকার যোগান নিশ্চিত করা। ভারতের সবচেয়ে বড় উৎপাদনকারী সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া সম্প্রতি যুক্তরাজ্য ও ব্রাজিলে টিকার চালান নির্দিষ্ট সময়ে পাঠায়নি। বাংলাদেশেও ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিশ্রুত ৫০ লাখ ডোজের মধ্যে ২০ লাখ ডোজ চালান এসেছে এবং মার্চের টিকার চালান এখনো আসেনি। ভারত এরই মধ্যে ৬ কোটি ডোজ টিকা ৭৬টি দেশে রপ্তানি করেছে, যার অধিকাংশই ছিল অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা। আরো পড়তে পারেন: ইউরোপীয় দেশগুলোতে আবারও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়া হবে টিকা নেওয়ার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা: পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এবং এসব থেকে কী বোঝা যায় টিকা উৎপাদনে হঠাৎ সমস্যার কারণ কি ভারত না আমেরিকা? ভারতে শনাক্ত হয়েছে নতুন ধরনের 'ডাবল মিউট্যান্ট' কোভিড ভাইরাস পহেলা এপ্রিল থেকে ৪৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য টিকা কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে ভারত ভারত কেন এই পদক্ষেপ নিলো? ভারতের এই সিদ্ধান্তটি এমন সময় এলো যখন ভারতে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বুধবার ভারতে নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৪৭ হাজারের বেশি মানুষ, যা এ বছরে দৈনিক আক্রান্তের হিসেবে সর্বোচ্চ। বুধবার ভারতে মৃত্যু হয়েছে ২৭৫ জনের। পহেলা এপ্রিল থেকে ৪৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য টিকা কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে তারা। আর এই কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর টিকার চাহিদা বাড়বে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিবিসি'র সৌতিক বিশ্বাসকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র থেকে জানানো হয়, "(রপ্তানি বন্ধ) এটি সাময়িক পদক্ষেপ। অভ্যন্তরীণ চাহিদাকে প্রাধান্য দিতে হবে।" তারা জানিয়েছে এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত ভ্যাকসিনের যোগান ব্যহত হতে পারে, তবে মে মাসে অন্তত একটি ভ্যাকসিনকে জরুরি অনুমোদন দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। অভ্যন্তরীন চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে টিকা রপ্তানি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে ভারত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার থেকে ভারত কোনো টিকা রপ্তানি করেনি। তবে এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে ভারতের সরকার বা সিরাম ইনস্টিটিউট আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা উৎপাদনকারী সংস্থা সিরাম ইনস্টি���িউট অব ইন্ডিয়া এরই মধ্যে যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল, সৌদি আরব ও মরক্কোতে করোনাভাইরাস টিকার চালান পাঠানো স্থগিত করেছে। সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে এ বছর তারা একশো কোটি ডোজ তৈরি করবে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য। ভারতে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাস টিকা রপ্তানির ক্ষেত্রে দেশটি সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে বিবিসিকে। +text: ভারতের পুনেতে মিউকোরমাইকোসিস আক্রান্ত একজন রোগীকে পরীক্ষা করছেন একজন চিকিৎসক। এদের একজন বর্তমানে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনদিন আগে আরো এক ব্যক্তি বারডেম হাসপাতালে মারা গেছেন। চিকিৎসকরা সন্দেহ করছেন তিনিও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত ছিলেন। করোনা ভাইরাসের 'ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট' রুখতে বাংলাদেশের সরকার যখন নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে, ঠিক সে সময় দেশটিতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হাবার খবর অনেকের মাঝে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম মহাসচিব চিকিৎসক ও অধ্যাপক রশিদ-ই-মাহবুব বলেন, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কতজন ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হচ্ছে সেটির পরিসংখ্যান রাখা দরকার। ব্ল্যাক ফাঙ্গাস কী? এটি একটি ছত্রাক-জনিত রোগ। মিউকোরমাইকোসিস খুবই বিরল একটা সংক্রমণ। মিউকোর নামে একটি ছত্রাকের সংস্পর্শে এলে এই সংক্রমণ হয়। সাধারণত এই ছত্রাক পাওয়া যায় মাটি, গাছপালা, সার এবং পচন ধরা ফল ও শাকসবজিতে। চিকিৎসকরা বলছেন, এই ছত্রাক মাটি এবং বাতাসে এমনিতেই বিদ্যমান থাকে। এমনকি নাক ও সুস্থ মানুষের শ্লেষ্মার মধ্যেও এটা স্বাভাবিক সময়ে থাকতে পারে। এই ছত্রাক সাইনাস, মস্তিষ্ক এবং ফুসফুসকে আক্রান্ত করে। কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের ফুসফুস যেহেতু দুর্বল থাকে, সেজন্য তাদের ক্ষেত্রে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত রোগীর চিকিৎসা করছেন ঢাকার বারডেম হাসপাতালের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন। অধ্যাপক হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস যেহেতু সংক্রামক নয়, সেজন্য এটা নিয়ে চিন্তার কোন কারণ নেই। "পাসপোর্টে উল্লেখ না থাকলেও বাংলাদেশিরা ইসরায়েলে যেতে পারবে না" কীভাবে ১৯৪৭ সালে দু'ভাগ হয়েছিল কাশ্মী��� হোয়াইট ফাঙ্গাস বা সাদা ছত্রাক করোনা রোগীদের জন্য নতুন আতঙ্ক কী ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়? ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত রোগীদের সাধারণত যেসব উপসর্গ দেখা দেয় তার মধ্যে রয়েছে: •নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং নাক থেকে রক্ত পড়া •চোখে ব্যথা এবং চোখ ফুলে যাওয়া •চোখের পাতা ঝুলে পড়া •চোখে ঝাপসা দেখা, যার থেকে পরে দৃষ্টিশক্তি চলে যায় •নাকের চামড়ার চারপাশে কালো ছোপ ছোপ দাগ দেখা দেয়া মিউকোর নামের ছত্রাক দেখা যায় মাটিতে, গাছপালায়, সার এবং পচন ধরা ফলে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস থেকে সুরক্ষার উপায় যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ফর ডিজিজ কন্ট্রোল বলছে, যেসব জায়গায় ছত্রাকের উপস্থিতি আছে সেসব জায়গা এড়িয়ে যাওয়া খুবই কঠিন। চিকিৎসকরা বলছেন, যেসব ছত্রাকের কারণে মিউকোরমাইকোসিস হয় সেটা পরিবেশে থাকা খুবই সাধারণ ঘটনা। তবে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল তারা কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে যাতে করে মিউকোরমাইকোসিস সংক্রমণের সম্ভাবনা কমিয়ে আনা যেতে পারে। এগুলো তুলে ধরা হলো। ১. যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল বা সিডিসি বলছে, যেসব জায়গায় অনেক বেশি ধুলোবালি রয়েছে সেসব জায়গা এড়িয়ে চলা। যদি সেসব জায়গা এড়িয়ে চলা সম্ভব না হয়, তাহলে এন৯৫ মাস্ক ব্যবহার করা। ২. প্রাকৃতিক দুর্যোগে যেসব স্থাপনা পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলোর সরাসরি সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা। সিডিসি বলছে এসব জায়গা থেকে ছত্রাকের সংক্রমণ হতে পারে। ৩. শরীরের চামড়ায় যাতে কোন ইনফেকশন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা। কোথাও কেটে গেলে কিংবা চামড়া উঠে গেলে সেটি যাতে ধুলো-ময়লার সংস্পর্শে না আসে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ৪. কোভিড-১৯ রোগীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা ৫. রোগীর স্টেরয়েড ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাবধানী হতে হবে। বারডেম হাসপাতালে রেসপিরেটরি মেডিসিনের অধ্যাপক স্টেরয়েডের ব্যবহার ডায়াবেটিসকে অনিয়ন্ত্রিত করে তুলতে পারে। ফলে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমতি হবার ঝুঁকি বেশি ধাকে। ৬. রোগীকে অক্সিজেন দেবার সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা। ৭. মাস্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল বলছে, এসব সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নিলেই যে মিউকোরমাইকোসিস সংক্রমণ এড়ানো যাবে সেটি এখনো পুরোপুরি প্রমা��িত নয়। বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত রোগী চিহ্নিত হয়েছে। এই খবর অনেকের মাঝে বেশ উদ্বেগ তৈরি করেছে। +text: ১২ মাসের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার আর স্টিভ স্মিথ এছাড়া যিনি বল ট্যাম্পারিং করেছেন, সেই ক্যামেরন ব্যানক্রফটকে ৯ মাসের জন্য নিষিদ্ধ করেছে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ওদিকে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগও স্টিভ স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নারকে এবারের আসর থেকে নিষিদ্ধ করেছে। দুজনের মোট ১.৯ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি রয়েছে। স্মিথের দল রাজস্থান রয়্যালস এবং ওয়ার্নারের দল সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। এর আগেই চলমান ঘটনার প্রেক্ষিতে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের দল সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের অধিনায়কের পদ ছেড়ে দিয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার। এর আগে স্টিভ স্মিথও রাজস্থান রয়্যালসের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন। আজ দক্ষিণ আফ্রিকা ত্যাগ করবেন স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার ও ক্যামেরন ব্যানক্রফট। কেপটাউন টেস্টের তৃতীয় দিন ইচ্ছাকৃত ভাবে বলের আকার নষ্ট করার অপরাধে স্টিভ স্মিথ ও ব্যানক্রফটকে শাস্তি দিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল। তবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার দায়ে এই দুজন সহ, ডেভিড ওয়ার্নারকেও ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে। আরো পড়ুন: হয়রানি রুখে দাঁড়ানো এক বাংলাদেশি নারীর গল্প একজন কূটনীতিক যখন গুপ্তচর হয়ে ওঠেন ৯ মাসের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন ক্যামেরন ব্যানক্রফট ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সততা বিভাগের প্রধান ইয়াইন রয় এখন পর্যন্ত বল ট্যাম্পারিংয়ের সাথে অস্ট্রেলিয়ার কোচ ড্যারেন লেম্যানের সংশ্লিষ্টতা পাননি। যদিও সেদিনের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে দ্বাদশ ব্যক্তি পিটার হ্যান্ডসকম্বের মাধ্যমে লেম্যান ব্যানক্রফটের কাছে বার্তা পাঠান। এরপর যে বস্তু দিয়ে বলের আকার পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছেন ব্যানক্রফট সেটি তিনি লুকানোর চেষ্টা করেন। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী জেমস সাদারল্যান্ড জানান, লেম্যান এখনো পদত্যাগ করেননি এবং তার সাথে চুক্তি বহাল রাখবে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড। জোহানেসবার্গে শুক্রবার শুরু হবে দুদলের মধ্যে চতুর্থ ও শেষ টেস্ট। এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার একাদশে থাকবেন ম্যাট রেনশ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও জো বার্নস। অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করবেন টিম পেইন। জানা গেছে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল, পৃষ্ঠপোষক ও ভক্তদের চাপের মুখেই স্মিথ, ওয়ার্নার ও ব্যানক্রফটকে দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। বল ট্যাম্পারিং বা ইচ্ছাকৃতভাবে বলের আকার বদলানোর পরিকল্পনা করার অপরাধে স্টিভ স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নারকে ১২ মাসের জন্য সব ধরণের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। +text: জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ইফতেখার মনির বিবিসি বাংলাকে বলেন, শনিবার সিদ্দিকুরের চোখে অপারেশন করার পর আজ সকালে তার চোখের ব্যান্ডেজ খোলা হয়েছে। "তার দুই চোখের অবস্থাই খারাপ ছিল অপারেশনের আগে। এখনো খারাপ। দেখা গেছে, ডান চোখের অবস্থা বেশি খারাপ। বাম চোখে গতকাল পর্যন্ত কোন আলো দেখতে পায়নি। আজ সকালে একবার বলছে দেখতে পাচ্ছে, একবার বলছে পাচ্ছে না।" "এটা খুবই ভাইটাল জিনিস। সে যদি আলো দেখতে নাই পায়, তাহলে তো কিছু করার থাকে না। আলো থাকলে পরবর্তীতে সে চোখে কোন কিছু করা যায় কিনা, সেটা আমরা চিন্তাভাবনা করবো।" "এক্ষেত্রে বলবো, বাম চোখের বেলায় আমরা কিছুটা আশার আলো দেখছি। হয়তো পরবর্তী ফলোআপের ভিত্তিতে আমরা বুঝতে পারবো। হয়তো পরে এ চোখে আমরা একটি অপারেশন করবো।" সহযোগী অধ্যাপক ইফতেখার মনির জানিয়েছেন, দুপুরে সিদ্দিকুরের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড বৈঠক করে এ কথা জানিয়েছে। শনিবার সকালে সিদ্দিকুরের দুই চোখে অপারেশন করা হয়। চিকিৎসক জানিয়েছেন, সিদ্দিকুরের ডান চোখের ভেতরের অংশ বের হয়ে আসছিল; তা যথাস্থানে বসানো হয়েছে। বাঁ চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; রক্ত ছিল, তা পরিষ্কার করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়া সাতটি সরকারি কলেজ ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা কলেজ, তিতুমীর কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও সরকারি বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থীরা রুটিনসহ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার দাবিতে গত বৃহস্পতিবার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনের রাস্তায় অবস্থান নেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ছোড়ে পুলিশ। টিয়ারশেলের আঘাতে আহত হন সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান। সিদ্দিকুর সরকারী তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। তার বাড়ি ময়মনসিংহের ঢাকেরকান্দা গ্রামে। পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেলের আঘাতে আহত ছাত্র মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমানের দুটি চোখের অবস্থাই খারাপ। সিদ্দিকুর আদৌ দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবেন কিনা, তানিয়ে এখুনি নিশ্চিত করে কিছু বলতে চাননি চিকিৎসকেরা। +text: মুদি দোকানদার রহমত আলী তবে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা তাদের মধ্যে খুব একটা যে আছে তেমনটা না। চায়ের দোকান, কাপড়ের দোকান, অটোরিক্সা চালক-রাস্তাঘাটের সাধারণ মানুষ কারো মধ্যে প্রকাশ্যে এই নির্বাচন নিয়ে তেমন একটা আলোচনা নেই। মুদি দোকানদার রহমত আলীর কাছে জানতে চেয়েছিলাম এবারের নির্বাচনে কোন বিষয়গুলো তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ? কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্ব নিয়ে বলছিলেন "যে প্রার্থী আসুক তার কাছে আমাদের চাওয়া বেড়া বাজারটার যাতে উন্নতি করে। কারণ আমাদের ব্যবসা বাণিজ্যের অবস্থা খুব খারাপ"। আরো পড়ুন: আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টির 'বিচিত্র' আসন ভাগাভাগি গত ১০ বছরে কী পরিবর্তন এসেছে বাংলাদেশে? নির্বাচনী প্রচারণায় যে বিষয়গুলো গুরুত্ব দেবে দুই দল গৃহিণী আবেদা খাতুন এখানকার একজন গৃহিণী আবেদা খাতুন বলছিলেন " ব্যবসা বাণিজ্যের পরিস্থিতি ভালো না। আর রাস্তাঘাটের অবস্থা খুব খারাপ। সেটা উন্নয়ন করতে হবে" এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের শামসুল হক টুকু। তিনি বেড়ার অধিবাসী। বেড়ার বাজারে একাধিক মানুষের সাথে কথা বলার চেষ্টা আমি করেছি। কিন্তু তারা মুখ ফুটে কিছু বলতে চাচ্ছিলেন না। এর কারণ কী? নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক মানুষ আমাকে জানিয়েছেন তারা কী চান এটা এখন আর প্রকাশ্যে বলার মত অবস্থা তাদের নেই। কারণ সেটা বললেই হয়তবা কোন হামলার শিকার হতে পারে। কিন্তু শঙ্কাটা কিসের? বেড়ার মানুষ বলছেন, যে ভোটে দাঁড়াবে তার মধ্যে থেকে ভালো প্রার্থীকেই তারা ভোট দেবেন। অনেকে আবার একটু সাহস দেখিয়ে বলেছেন তারা নতুন প্রার্থী চান এবং তাকেই তারা ভোট দেবেন। পুরাতন প্রার্থীদের আর তারা চাচ্ছেন না। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: ১৫ বছর ধরে নারীদের হত্যা করেছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা জয়নবকে বাঁচাতে বিশ্ব জুড়ে দুর্লভ রক্তের সন্ধান নিজামুদ্দিনের মাজারে মেয়েরা কেন নয়, প্রশ্ন হাইকোর্টের ভারতের সবচেয়ে ধুমধামের বিয়ে ঘিরে যত হৈচৈ বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বের এই শহর পাবনা-১ নম্বর আসনটি (বেড়া-সাঁথিয়া) নানা কারণেই গুরুত্বপূর্ণ। এই আসনটি রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ বর্তমানে এর সমীকরণ মেলানো জটিল। বাংলাদেশের নিবন্ধন বাতিলকৃত জামায়াতে ইসলামির আমীর মতিউর রহমান নিজামী এই আসনটিতে ১৯৯১ জয়ী হন। ২০০১ সালে আবারো তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এই আসনের সাঁথিয়া উপজেলা তার জন্মস্থান। অর্থাৎ আপাতদৃষ্টিতে এই আসনটি জামায়াত সমর্থিত একটা আসন বললে বেশি বলা হবে না। সাঁথিয়ার একটি চায়ের দোকান তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন এলাকার অবস্থা আগের চেয়ে পরিবর্তন হয়েছে। মো.আব্দুল কাদের বেড়া উপজেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বেড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি বলছিলেন, সাংগঠনিকভাবে বহু আগে থেকে তারা দলীয় কর্মসূচী পালন করে আসছেন। এই মতিউর রহমান নিজামীর ২০১৬ সালে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকর করা হয়। দশকের পর দশক ধরে যে এলাকার মানুষ জামায়াতে ইসলাম এবং তার আমীরের অনুসারী হয়ে নির্বাচনের সময় ভোটব্যাংকে নিজেদের সমর্থন জানিয়েছেন সেই দল বা ব্যক্তির এখন অস্তিত্ব নেই। তাহলে এবারের নির্বাচনে এখানকার ভোটাররা কোন বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছেন? তাদের কাছে কী স্থানীয় উন্নয়ন নাকি স্থানীয় ,জাতীয় রাজনীতি বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে? বিকাল চারটা। সাঁথিয়া উপজেলা। বাজারের মধ্যে একটা চায়ের দোকান। এখানে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে কথা বলতেই অনেকেই নিজ আগ্রহেই মত প্রকাশ করতে চাইলেন। যেটা বেড়া উপজেলার থেকে একেবারে ভিন্ন চিত্র। কৃষির পাশাপাশি তাঁত শিল্প এখানকার মানুষের মূল জীবিকা তাঁত শিল্পের মন্দার কথা বলেছেন অনেকে পাবনা ১ আসন, সাঁথিয়া এবং বেড়ার আংশিক নিয়ে এই আসন গঠিত। এখনকার মানুষের মূল পেশা কৃষি। তারপরেই রয়েছে তাঁত শিল্প। দুই উপজেলায় ১৭ হাজার তাঁতশিল্পে মোট ৩৭ হাজারের মত শ্রমিক কাজ করছে। এছাড়া ব্যবসা বলতে যেটা রয়েছে সেটা ছোট-মুদি দোকানের ব্যবসা। বড়-ছোট কোন শিল্পকারখানা এখানে নেই। মো.আব্দুল কাদের (বেড়া উপজেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বেড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান) বলছিলেন " এক এক নেতার কিছু ফলোয়ার থাকে। কিন্তু এখন পরিবেশ পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। আওয়ামী লীগ গত দশ বছরে এখানে যা উন্নয়ন করেছে তাতে করে আমার মনে হয় মানুষ আর ভুল করবে না, আর এই উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রেখেই আওয়ামী লীগ ভোটে লড়া�� এর জন্য প্রস্তুত"। আমি দুই উপজেলার অসংখ্য মানুষের সাথে কথা বলেছি জানার চেষ্টা করেছি, যে এবারের নির্বাচনে তাদের কাছে মূল ইস্যু কী? অবাক হওয়ার বিষয় হল তারা স্থানীয় উন্নয়ন/ ইস্যুর চেয়ে রাজনীতিকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। এবং সেখানে অবধারিত ভাবে চলে আসছে জামায়াতে ইসলাম এবং মতিউর রহমান নিজামীর নাম। তবে ব্যবসা বাণিজ্যের মন্দার কথা তারা উল্লেখ করেছেন। বলছিলেন গত বছর ৫/৭ ধরে তাদের ব্যবসার মন্দা। এই ব্যবসা বলতে মূলত তাদের তাঁত কেন্দ্রিক যে কাপড়ের ব্যবসা সেটা এবং অন্যান্য ছোটখাট ব্যবসার কথা বলতে চেয়েছেন। এটাও তারা বলছেন এই ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নতির জন্য একজন ভালো জনপ্রতিনিধি তাদের দরকার। সাঁথিয়ার রাজনীতি এখনো আবর্তিত হচ্ছে যতটা না জামায়াত ইসলাম নিয়ে তারচেয়ে অনেক বেশি ব্যক্তি মতিউর রহমান নিজামী নিয়ে। এই ব্যক্তির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে দুই বছরের বেশি সময় আগে, পরিবারের প্রত্যেক সদস্য থাকেন বাংলাদেশের বাইরে। কিন্তু মৃত মি. নিজামী এবং তার পরিবার কেন্দ্রিক মানুষের সহানুভূতি এবং সমর্থন যে এখনো আছে সেটা আমি অনেক মানুষের সাথে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করেছি। সালাউদ্দিন ইকবাল এই আসনের বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলছিলেন, ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দলীয় জোট সব এখন ঐক্যবদ্ধ। এখানকার মানুষের মূল পেশা কৃষি তিনি বলছিলেন " ২০ দলের মধ্যে জামায়াতে ইসলাম রয়েছে। বেড়া, সাঁথিয়াতে বিএনপি এবং জামায়াত এখানে ঐক্যবদ্ধ"। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে এই আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে আবু সাইয়িদ দাঁড়িয়েছেন, তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের তথ্য প্রতিমন্ত্রী ছিলেন একসময়। দলবদল করে এখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছেন। এলাকায় মতিউর রহমানের সমর্থকদের একটা তির্যক মনোভাব রয়েছে মি. সাইয়িদের প্রতি। তারা মনে করেন মি. নিজামীর ফাঁসি হওয়ার পিছনে তার ভূমিকা ছিল প্রত্যক্ষ। সালাউদ্দিন ইকবাল বলছিলেন "এখানে প্রতীকই প্রধান বিষয়। এই প্রতীক দিয়ে আমরা একটা প্রতিযোগিতা পূর্ণ নির্বাচনে যেতে পারবো"। স্থানীয় উন্নতির পাশাপাশি রাজনীতি নিয়ে ভাবছেন এখানকার সাধারণ মানুষ জামায়াতে ইসলাম একসময় বিএনপি জোটের বড় একটা ভোট ব্যাংক ছিল। দলটির অধিকাংশ নেতা যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত হয় এবং বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করে। এখন দলটির আইন অনুযায়ী কোন অস্তিত্ব নেই। কিন্তু বিএনপির হয়ে যে কেউ এই নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। মো. শাহজাহান আলী। স্থানীয়ভাবে তিনি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি বলছিলেন " এখানে মতিউর রহমানের নিজামীর প্রতি একটা সিমপ্যাথি ভোট আছে এটা ঠিক। আবার সাইয়িদ সাহেব দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছেন এখন ধানের শীষে ভোট করছেন সেটা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে"। তিনি বলছিলেন "অতীতের নির্বাচনগুলো দেখে মনে হয়েছে এবারে প্রতিটা মানুষ একটা সুষ্ঠু ভোটের কথা বলছে। তাদের মনে কী আছে সেটা পরিষ্কার করে বলে না। মানুষ মুখ খোলে না। তারা চাই নিরপেক্ষ ব্যবস্থাপনায় সুষ্ঠু নির্বাচন"। এই আসনের অপর প্রার্থীরা হলেন: প্রার্থী-দল-প্রতীক নাজিবুর রহমান -স্বতন্ত্র-আপেল সরদার শাহজাহান - জাতীয় পার্টি -লাঙ্গল আব্দুল মতিন-ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-হাতপাখা শাখা্ওয়াত হোসেন -এনপিপি-আম শরিফুল ইসলাম -তরিকত ফেডারেশন-ফুলের মালা মো.জুলহাস নাইন-বাংলাদেশ ওয়াকার্স পার্টি-কোদাল বেলা ১১টা। পাবনার বেড়া উপজেলা। হাটের দিন। তাই লোক সমাগম প্রচুর। +text: চুরুর রাস্তায় মুখ ঢেকে মহিলারা আবহাওয়া-বিষয়ক ওয়েবসাইট এল ডোরাডো জানাচ্ছে, গত চব্বিশ ঘন্টায় বিশ্বের সবচেয়ে উষ্ণতম পনেরোটি স্থানের মধ্যে দশটিই ছিল ভারতে। পনেরোটির মধ্যে বাকি চারটি ছিল পাকিস্তানে ও একটি কুয়েতে। বস্তুত উত্তর ও মধ্য ভারতের এক বিস্তীর্ণ অঞ্চলে মানুষ প্রচন্ড দাবদাহে ভীষণ কষ্ট পাচ্ছে। এল ডোরাডোর সাইটে বিশ্বের উষ্ণতম পনেরোটি স্থান আবহাওয়াবিদরা বলছেন, মৌসুমী বৃষ্টিপাত এবার কিছুটা দেরিতে ভারতে প্রবেশ করায় পরিস্থিতি আরও সাঙ্ঘাতিক হয়ে উঠেছে। ভারতে রাজস্থানের মরু অঞ্চলে চুরু শহরে গত কয়েকদিন ধরেই তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রির আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। গতকাল সোমবার সেখানে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৫০.৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। আর শুধু চুরুই নয়, রাজস্থানের গঙ্গানগর, বিকানের, সওয়াই মাধোপুর, পিলানি, জয়সলমির, হরিয়ানার নারনাউল বা উত্তরপ্রদেশের বান্দার মতো শহেরগুলোতেও তাপমাত্রা পঞ্চাশ ছুঁই-ছুঁই! আর এই সব জনপদের বেশির ভাগই জায়গা করে নিয়েছে এই মুহুর্তে বিশ্বের 'হটেস্ট টপ টেনে'। রাজস্থানের চুরুতে তৃষ্ণার্ত পথচারীরা চুরুতে এক কৃষক দম্পতির কথায়, "এই মারাত্মক গরমে আর রোদে আমাদের বাড়ি থেকে বেরোনোই বন্ধ হয়ে গেছে।" "পঞ্চাশ ডিগ্রিতে কোনও কাজ করাও সম্ভব নয়, আর ফলে আমাদের রুটি-রুজিও এখন ঘোর সঙ্কটে", বলছিলেন তারা। ভারতে আবহাওয়া বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এম মহাপাত্র বিবিসিকে জানাচ্ছেন, গত তিন-চারদিন ধরে উত্তর-পশ্চিম ও মধ্য ভারতে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে সেটাকে বলা হয় 'তীব্র তাপপ্রবাহ' বা 'সিভিয়ার হিট-ওয়েভ কন্ডিশন'। "আরও দুশ্চিন্তার কথা হল, এমন কোনও ওয়েদার সিস্টেমও আমরা দেখতে পাচ্ছি না যাতে আগামী কয়েকদিনে এই অঞ্চলে বৃষ্টি আশা করা যেতে পারে", বলছেন মি মহাপাত্র। ভারতে মনসুনের আগের তিন মাস ছিল গত ৬৫ বছরের মধ্যে শুষ্কতম ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের তাপমাত্রা এখন মধ্যপ্রাচ্য বা সাহারান আফ্রিকাকেও পেছনে ফেলে দিয়েছে - এবং রাজধানী দিল্লিতেও তাপমাত্রা ছেচল্লিশ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। দিল্লির রাজপথে ভারতের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পর্যটকরাও এই মারাত্মক গরমে কাবু। মুম্বাইয়ের একদল ট্যুরিস্ট যেমন বলছিলেন, তাদের আশা ছিল দিল্লিতে বোধহয় মুম্বাইয়ের মতো প্যাচপ্যাচে গরম হবে না - কিন্তু দিল্লি যে এরকম তেতে আছে তারা ভাবতেই পারেননি। "আগে জানলে এই 'সুপারহট' শহরে হয়তো আমরা আসতামই না", এমন কথাও বলছেন অনেকেই। দিল্লিতে ইন্ডিয়া গেটের সামনে কাটতি বেড়েছে সানগ্লাসের মৌসম ভবনের বিজ্ঞানী সোমা সেনরায় মনে করছেন এবারে ভারতের এই তাপপ্রবাহ সত্যিই ব্যতিক্রমী। তার কথায়, "পশ্চিম রাজস্থান, পাঞ্জাব, দক্ষিণ উত্তরপ্রদেশ ও বিদর্ভ-সহ ভারতের যতটা বিস্তীর্ণ অঞ্চলে এ বছর সিভিয়ার হিট-ওয়েভ রেকর্ড করা হয়েছে, তা সত্যিই বিরল।" এর একটা কারণ হতে পারে, গত ৩১ মে যে তিন মাসের প্রি-মনসুন পিরিওড বা প্রাক-মৌসুমী বৃষ্টির সময়কাল শেষ হয়েছে - গত ৬৫ বছরের মধ্যে ভারতে সেই সময়কাল ছিল দ্বিতীয় শুষ্কতম। চুরুতে ভারতের আবহাওয়া বিভাগের কার্যালয় ভারতে বেসরকারি আবহাওয়া পূর্বাভাস সংস্থা স্কাইমেটও মনে করছে এবার মৌসুমী বৃষ্টিও ভারতে বিশেষ একটা সুখবর বয়ে আনবে না। স্কাইমেটের চিফ ফোরকাস্টার মহেশ পালাওয়াট বিবিসিকে বলছিলেন, "প্রথম কথা মনসুন এবার ভারতে ঢুকছেই অনেক দেরি করে।" "আমাদের ধারণা ৭ জুন মনসুন কেরালা উপকূলে আঘাত হানবে।" হরিয়ানাতে জাতীয় সড়কে ট্রাকচালকদের ফলের রস খাওয়াচ্ছে নানা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা "কিন্তু সাধারণত মনসুন যেরকম প্রবল বৃষ্টির মধ্যে দিয়ে কেরালা বা কর্নাটকে আছড়ে ��ড়ে এবারে কিন্তু তার সেই তীব্রতাও থাকবে না।" ফলে প্রায় বৃষ্টিহীন গত তিন মাস, এখন রেকর্ড-ভাঙা পঞ্চাশ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই তাপমাত্রা এবং ছিঁটেফোঁটা বৃষ্টির আশাও অনেক দূরে - এটাই এখন ভারতের এক বিস্তীর্ণ অংশের ছবি। আর এই অসহনীয় পরিস্থিতির মধ্যেই হাঁসফাঁস করছে দিল্লি থেকে রাজপুতানা, বিদর্ভ থেকে বুন্দেলখন্ড। ভারতে গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে যে চরম তাপপ্রবাহ চলছে, তাতে কোনও কোনও জায়গায় তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসও ছাড়িয়ে গেছে। +text: সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রোববার সকালে এ কথা জানিয়েছেন। সরকারের দেয়া প্রথম দফা এক সপ্তাহের লকডাউনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ ১১ই এপ্রিল। তবে রোববার বিকালে সেটি আরো দুইদিন বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। বিকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারি করা একটি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধকল্পে শর্তসাপেক্ষে সার্বিক কার্যাবলি/চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি ১৪ এপ্রিল ২০২১ তারিখ ভোর ৬টা পর্যন্ত বর্ধিত করা হলো। প্রথম দফা ঢিলেঢালা লকডাউনে চালু ছিল গণ-পরিবহন, দোকানপাট ও শপিংমল, বইমেলা, কলকারখানা এবং গার্মেন্টস কারখানা। বন্ধ ছিল দূরপাল্লার যানবাহন এবং অভ্যন্তরীণ রুটের বিমান চলাচল। পরবর্তী ঘোষণা আসার আগে, আগামী দুইদিন কি তাহলে দূরপাল্লার যানবাহন, লঞ্চ এবং অভ্যন্তরীণ রুটের বিমান চলবে? মি. কাদের বলেছেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে দূরপাল্লার যাত্রী পরিবহন। আরো পড়তে পারেন: পহেলা বৈশাখ থেকে সাত দিনের 'কঠোর' লকডাউন বাংলাদেশে লকডাউন অকার্যকর হলে সেনাবাহিনী ও কারফিউর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের বাংলাদেশে লকডাউন 'অকার্যকর' হয়ে পড়ছে দোকানপাট ও শপিং মল খোলার অনুমতি দিলো সরকার সরকারের প্রভাবশালী এই মন্ত্রী রোববার এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান, যা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। তিনি বলেন, "সোমবার এবং মঙ্গলবার যথারীতি শুধুমাত্র দেশের সিটি কর্পোরেশন এলাকায় শর্তসাপেক্ষে সমন্বিত ভাড়ার অর্ধেক আসন খালি রেখে গণ-পরিবহন চলবে এবং দূরপাল্লার যাত্রী পরিবহন বন্ধ থাকবে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত।" তিনি বিআরটিসিসহ পরিবহন মালিক শ্রমিক সংগঠনসমূহকে সরকারি নির্দেশনা মেনে পরিবহ��� চালানোর অনুরোধ জানান। প্রথম দফা লকডাউনের মেয়াদ শেষ এবং ১৪ই এপ্রিল থেকে সর্বাত্মক লকডাউনের বিষয় নিয়ে রোববার বিকেলে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হবার কথা রয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় সর্বাত্মক লকডাউন বিষয়ক একটি প্রজ্ঞাপন জারি হবে--এমন আভাস দিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। বুধবার থেকে যদি পূর্বঘোষণা অনুযায়ি 'কঠোর লকডাউন' শুরু হয়ে যায় তাহলে স্পষ্টতই দূরপাল্লার যানবাহন আর চালু হবার সুযোগ থাকছে না। বিশেষজ্ঞরা গত কয়েকদিন ধরে বলে আসছেন, যেভাবে এ দফায় লকডাউন চলছে, তাতে দৃশ্যত সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। শুক্রবার থেকে খুলেছে দোকানপাট ও শপিংমল---ফাইল ফটো এর ফলাফলও দেখা যাচ্ছে, মানে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শনিবারের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে ৭৭ জন মানুষ মারা গেছেন, যা এখন পর্যন্ত একদিনে মারা যাওয়া সর্বোচ্চ সংখ্যক ব্যক্তি। এর আগে ৯ই এপ্রিল বাংলাদেশের জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, সংক্রমণের উর্ধ্বগতি ঠেকাতে ১৪ই এপ্রিল থেকে পুরোদেশে সাত দিনের 'কঠোর লকডাউন' শুরু হবে। ফরহাদ হোসেন বলেছেন, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী এই কঠোর লকডাউন দেয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। এই সময়ে জরুরি সেবা ছাড়া সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিতসহ সব ধরণের অফিস এবং একই সাথে কল কারখানাও বন্ধ থাকবে। কঠোর লকডাউনের সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। প্রতিমন্ত্রী জানান, লকডাউন যাতে কার্যকর করা যায়, সেজন্য হতদরিদ্র মানুষদের খাদ্য সহায়তা দেয়ার জন্য ইতোমধ্যে দেশের সব ইউনিয়ন ও উপজেলায় সাড়ে পাঁচশো' কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে ১৪ই এপ্রিল থেকে দেশব্যাপী এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন শুরুর আগে আগামীকাল ও পরশু অর্থাৎ ১২ই এপ্রিল এবং ১৩ই এপ্রিল দেশে প্রথম দফা লকডাউনের ধারাবাহিকতা চলবে। +text: ভারত ও চীনের স্বশাসিত এলাকা তিব্বতকে সংযুক্ত করেছে যে নাথুলা পাস, সেখানে চীনের সৈন্যদের পাহারা - ফাইল ছবি ডোকালাম অঞ্চলকে কেন্দ্র করে ভারত আর চীনের মধ্যে যখন উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তখন বারে বারেই উঠে আসছে ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধের প্রসঙ্গ। ওই যুদ্ধে ভারত শোচনীয়ভাবে পরাস্ত হয়েছিল। চীনের সরকারি গণমাধ্যম ক্রমাগত মনে করিয়ে দিচ্ছে ৬২-র সেই যুদ্ধের কথা। অন্যদিকে ভারতের তরফে বলা হচ্ছে ১৯৬২'র অবস্থা থেকে অনেক দূর এগিয়ে গেছে তারা। ঐতিহাসিক তথ্য এটাই যে ওই যুদ্ধে আমেরিকা ভারতকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিল। আমেরিকার তুলনায় ১৯৬২ সালের চীনা শক্তি বলতে গেলে কিছুই ছিল না। এক মহাশক্তিধর রাষ্ট্রের সাহায্য পেয়েও ভারত ওই যুদ্ধে কী ভাবে হেরেছিল? সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির সঙ্গে ভারতরে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের আমেরিকা, কানাডা ও লাতিন আমেরিকা স্টাডি সেন্টারের অধ্যাপক চিন্তামণি মহাপাত্রর কথায়, "যখন চীন ভারতের ওপরে হামলা করে, সেই সময়ে কিউবায় ক্ষেপণাস্ত্র সঙ্কট নিয়ে ব্যতিব্যস্ত ছিল আমেরিকা।" "সোভিয়েত ইউনিয়ন কিউবায় ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়ে দিয়েছিল, যার ফলে পারমানবিক যুদ্ধের একটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। গোটা পৃথিবীই সেই সময়ে একটা সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল," বলছিলেন চিন্তামণি মহাপাত্র। কেনেডিকে লেখা নেহরুর চিঠি অধ্যাপক মহাপাত্রের কথায়, "একটা কমিউনিস্ট দেশ চীন যখন ভারতের ওপরে হামলা করল, সেই একই সময়ে আরেক কমিউনিস্ট দেশ সোভিয়েত ইউনিয়ন আমেরিকার বিরুদ্ধে কিউবাতে ক্ষেপণাস্ত্র পাঠালো। আমেরিকা ভারতকে সাহায্য করতে পুরো তৈরি ছিল।" তিনি আরও বলেন, "তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডিকে বারেবারে চিঠি পাঠিয়ে সাহায্য চাইছিলেন। নেহরু এমনও বলেছিলেন যে তিনি যুদ্ধবিমান কিনতেও আগ্রহী।" নেহরুর চিঠি পেয়েই প্রেসিডেন্ট কেনেডি সাহায্যের সিদ্ধান্ত নেন। যদিও এটাও ঘটনা যে আমেরিকার পররাষ্ট্র দপ্তরের ওপরে পাকিস্তানের চাপ ছিল, যাতে চীনের বিরুদ্ধে ভারতকে সাহায্য না করা হয়। তার অর্থ কি এটাই যে প্রেসিডেন্ট কেনেডি এই ঘটনায় একা হয়ে গিয়েছিলেন? জন এফ কেনেডি "না। ব্যাপারটা সে রকম হয় নি," বলছিলেন অধ্যাপক মহাপাত্র। "তিনি একা পড়ে যাননি, কিন্তু পাকিস্তান আমেরিকার ওপরে চাপ দিচ্ছিল।" "গোঁড়ার দিকে নেহরু তো প্রেসিডেন্ট কেনেডির সঙ্গে যুদ্ধের সরঞ্জাম কেনার কথা বলছিলেন। কিন্তু তখনই ভারতীয় সেনাবাহিনীকে চীন এমন একটা ধাক্কা দিয়ে এগিয়ে আসতে লাগল, ফলে নেহরু ওয়াশিংটনে একটা বিপদ সঙ্কেত পাঠাতে বাধ্য হলেন। চীন পুরোপুরিভাবে সমতল এলাকা��় চলে এসেছিল।" নেহরুর ওই বিপদ বার্তা পেয়ে আমেরিকা ভারতকে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিলো। তবে যতক্ষণে আমেরিকার সাহায্য এসে পৌঁছুল, ততটা সময়ে চীন কিছুটা পিছিয়ে গেছে নিজের থেকেই। তাই আমেরিকার আর বিশেষ কিছু করার ছিল না। সিদ্ধান্ত নিতে কেন দেরী করল আমেরিকা? কেনেডি সেন্টারের প্রাক্তন সিনিয়র ফেলো অনিল আঠালে ২০১২ সালে রেডিফ ডট কমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, "ঘটনাচক্রে সেই সময়ে কিউবায় ক্ষেপণাস্ত্র সঙ্কট তৈরি হয়েছিল। বিশ্বের দুই পরাশক্তি আমেরিকা আর সোভিয়েত ইউনিয়ন - দুই পক্ষই কিউবায় হাজির। ওই পরিস্থিতিতে বিশ্বের গণমাধ্যম ভারত-চীন যুদ্ধটাকে পুরোপুরি উপেক্ষা করেছিল।" "কিন্তু এখন যদি আমরা পিছন ফিরে তাকাই তাহলে বুঝতে পারব যে কিউবায় ক্ষেপণাস্ত্র সঙ্কটটা অ্যাকাডেমিক রিসার্চের দিক থেকে বেশী গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ভারত চীন যুদ্ধের প্রভাব অনেক বেশী ছিল সেই সময়ে।" দালাইলামার সঙ্গে জওহরলাল নেহরু অধ্যাপক মহাপাত্র বলছেন, "১৫ দিনের যুদ্ধের পরে আমেরিকা যখন সাহায্য নিয়ে এলো, ততদিনে চীন পিছিয়ে গেছে। আমেরিকার এই ভয়টাও ছিল যে চীন যখন ভারতে হামলা করছে, সেই সময়েই পাকিস্তানও না ভারতে হামলা চালায়।" "তাই আমেরিকা পাকিস্তানকে বোঝানোর চেষ্টা করছিল যে চীন কমিউনিস্ট দেশ, নিজেদের এলাকা বাড়ানোর জন্য চীন তাদের দেশও দখল করে নিতে পারে। এই যুক্তিটা অবশ্য পাকিস্তান মানতে চায় নি। তখনই তারা আমেরিকার কাছে দাবী করে কাশ্মীরের ব্যাপারে আমেরিকা তাদের মদত দিক।" কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সঙ্কটকে বেশী গুরুত্ব কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে আমেরিকার কাছে সেই সময়ে কিউবার সঙ্কট বেশী গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমেরিকার ফ্লোরিডা থেকে কিউবার দূরত্ব মাত্র ৮৯ কিলোমিটার, আর সেখানে সোভিয়েত ইউনিয়ন ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে। আমেরিকার পুরো নজর তখন সেদিকেই ছিল। আর তখন আমেরিকাকে সাহায্য করার মতো কোনও দেশও ছিল না। নেহরু তখন জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনে ভারতকে সামিল করেছিলেন। ১৯৬২ সালের কিউবা মিসাইল সংকটের সময় একটি সোভিয়েত জাহাজের ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে একটি মার্কিন টহল বিমান জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের চীন স্টাডিজ সেন্টারের অধ্যাপক হেমন্ত আদলাখার কথায়, "নেহরুর ওই নীতিতে একটা বড় ধাক্কা লেগেছিল, কারণ জোটনিরপেক্ষ দেশগুলির কেউই ভারতের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয��ে দেয়নি সেই সময়ে। সোভিয়েত ইউনিয়নও ভারতকে একা ছেড়ে দিয়েছিল।" "যদিও আমেরিকা সাহায্য পাঠানোর আগেই চীন নিজের থেকেই কিছুটা পিছিয়ে গিয়েছিল, তবে আমেরিকা এগিয়ে না এলে চীন আরও অনেকটা ভেতরে ঢুকে পড়ত," বলছিলেন অধ্যাপক আদলাখা। অধ্যাপক মহাপাত্র অবশ্য মনে করেন যে নেহরুও নিজের জোটনিরপেক্ষ নীতির কারণেই প্রথমে আমেরিকার সাহায্য চাইতে কিছুটা সংকোচ করেছিলেন। কিন্তু চীন যখন আসাম পর্যন্ত পৌঁছে গেল, তখন নেহরুর সামনে আর কোনও বিকল্প ছিল না। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে আন্তর্জাতিক নীতির তুলনায় জাতীয় সুরক্ষাই বেশী গুরুত্বপূর্ণ। চীনের প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাইয়ের সঙ্গে জওহরলাল নেহরু সেই সংকটকালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি ভারতীয়দের মনে একটা জায়গা করে নিয়েছিলেন। ভারতের মানুষ মনে করতে শুরু করেছিল যে বিপদের সময়েই কেনেডি সহায়তা করেছেন। "কেনেডি সাহায্য করতে বেশ উৎসাহীই ছিলেন, যদিও ভারত তখনও সাহায্য চায়নি। কেনেডি তখন ভারতে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন," বলছিলেন অধ্যাপক মহাপাত্র। চীন কি জেনেবুঝেই ভারতের ওপরে হামলা করার সময়টা বেছেছিল? যে সময়ে কিউবায় ক্ষেপণাস্ত্র সঙ্কট চলছে, সেই সময়টাকেই কেন চীন ভারতের ওপরে হামলা করার জন্য বেছে নিয়েছিল, এই প্রশ্নে জবাবে অধ্যাপক মহাপাত্র বলছিলেন, "চীন আর সোভিয়েত ইউনিয়ন দুটোই যেহেতু কমিউনিস্ট দেশ, সম্ভবত সেই কারণেই হামলার সময়টা বেছে ছিল চীন।" তিনি আরও বলেন, "ভারতের ওপরে হামলার দু'বছর বাদে ১৯৬৪ সালে চীন প্রথম পরীক্ষামূলক ভাবে পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটায়।" তাঁর কথায়, এ নিয়ে কোনও দ্বন্দ্ব নেই যে ১৯৬২-র যুদ্ধের সেই সময় থেকে ভারত এখন অনেক এগিয়ে গেছে, আর কিউবাতে এখন মিসাইল সংকটও নেই। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কেনেডি ও নেহরু বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারেন: সাতচল্লিশে সিলেট কীভাবে পাকিস্তানের অংশ হল? উর্দুভাষীরা কেন বাংলাদেশের মূল সমাজে মিশতে পারেনি? ভারতকে বিদ্রূপ করে চীনের ‘বর্ণবাদী’ ভিডিও ভারত আর চীনের মধ্যকার চলমান উত্তেজনার পটভূমিতে বিবিসি হিন্দির বিশেষ প্রতিবেদন, তৈরি করেছেন রজনীশ কুমার: +text: আত্মবিশ্বাস একদম ছোটবেলা থেকেই তৈরি করতে হয়। মাত্র দুই বছরে এই কিশোরী জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্দোলনে সারা বিশ্বের দূত হয়ে উঠেছেন। তার ডাকে জড়ো হয় লক্ষ লক্ষ মানুষ। একজন কন্যা শিশু যেন নিজের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, বাবা, ভাই, স্বামী এবং শেষ জীবনে ছেলে তার দায়িত্ব নেবে - এমনটা না ভেবে "আমিও পারি" এই মনোভাব নিয়ে সামনে এগোতে পারে, সেই আত্মবিশ্বাস কীভাবে অর্জন করা সম্ভব? কন্যা শিশুকে নিজের ব্যাপারে এই আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে কিভাবে শেখানো যায়? আজ জাতিসংঘের বিশ্ব কন্যা শিশু দিবসে মা-বাবার জন্য মনোবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী ও শিশুদের বিকাশ বিষয়ক চিকিৎসকের পরামর্শ। সিদ্ধান্ত ও দায়িত্ব আত্মবিশ্বাস একদম ছোটবেলা থেকেই তৈরি করতে হয়, বলছেন মনোবিজ্ঞানী ডা. ইশরাত শারমিন রহমান। তিনি বলছেন, বাবা-মা শিশুর তার সাথে ছোটবেলা থেকে যে আচরণ করবে তার উপর নির্ভর করে শিশু আত্মবিশ্বাসী হবে কি হবে না। ছোট বেলা থেকেই কন্যা শিশুর মধ্যে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা তৈরি করতে হবে। তাকে কথা বলতে দিতে হবে। সেজন্য ছোট বেলা থেকেই সিদ্ধান্ত নিতে দেবার কথা বলছেন তিনি। অন্যদের সাথে তুলনা আত্মবিশ্বাস নষ্ট করে। "তুমি মেয়ে, তুমি কি বোঝ, এসব কথা না বলে ছোট ছোট সিদ্ধান্ত নিতে দেয়া। যেমন তাকে জিজ্ঞেস করা সকালের নাস্তায় সে কি খেতে চায়? ডিমটা সেদ্ধ হবে নাকি পোচ? কন্যা শিশুকে তার উপযোগী কোন দায়িত্ব দেয়া। সেটি পেরে উঠলে তার মনে হবে আমিও পারি।" তিনি বলছেন, ছোট বেলায় বাবা ও মায়ের মধ্যে যে সম্পর্কে শিশু দেখে তার উপর ভিত্তি করে নিজের অবস্থান ঠিক করে নেয় শিশু, বলছেন ডা. ইশরাত শারমিন। সে যদি দেখে পরিবারে বাবাই সব সিদ্ধান্ত নেয়, মায়ের কোন বক্তব্য থাকে না - তাহলে মেয়ে শিশুরা সেটাই শিখবে। এমন পারিবারিক পরিবেশ মেয়ে শিশুদের আত্মবিশ্বাস তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে। সমালোচনা ও অন্যদের সাথে তুলনা না করা বিশ্বব্যাপী সৌন্দর্য নিয়ে কন্যা শিশুকে অনেক বার্তা দেয়া হয়। বিভিন্ন দেশে তার নানা ধরন। সেন্টার ফর উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেন স্টাডিজ-এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ইশরাত শামিম বলছেন, "বাংলাদেশে মেয়েদের হয়ত তার পাশের বাড়ির মেয়েটি, বা চাচাতো-খালাতো বোনদের সাথে গায়ের রঙ, চুল নিয়ে তুলনা করা হয়। খুব সরাসরি বলা হয় দেখো ও কত সুন্দর, পরিপাটি, পড়াশুনায় তোমার চেয়ে তোমার কত ভাল। এরকম তুলনা করার কারণে আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়। মেয়েরা নিজেরাও অন্যদের সাথে তুলনা করে।" আরো পড়ুন: ফিনল্যান্ডে একদিনের জন্য প্রধানমন্ত্রী হলো ১৬ বছরের তরুণী ভারতে কন্যা শিশু কেন ���ত অনাকাঙ্ক্ষিত? মেয়ে শিশুর চেয়ে ছেলে শিশু বেশি জন্মায় কেন? তিনি বলছেন, টেলিভিশনের বিজ্ঞাপন ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম থেকেও মেয়েরা নিজেরা অন্যদের সাথে নিজেদের তুলনা করতে শেখে। তাদের শেখাতে হবে সৌন্দর্যের ধারণা ও মেয়েদের জীবন সম্পর্কে এসব জায়গায় সে যা দেখছে সেটাই বাস্তব দুনিয়া নয়। শিশুদের বিকাশ বিষয়ক চিকিৎসক ডা. রিয়াজ মোবারক বলছেন, "আমার কাছে অনেক অভিভাবক আসেন যারা মেয়ে বাচ্চার হয়ত কোথাও দাগ রয়েছে তারা সেটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা বলেন যে 'মেয়ে বড় হলে কেমন লাগবে'। তারা চিন্তা করেন যে বড় হলে মেয়ের বিয়ে হবে না। বাবা-মায়েদের বুঝতে হবে হবে যে কন্যা শিশু হলে মুখে দাগ বাড়তি ইস্যু নয়।" পরিবারে ছেলে ও মেয়েকে সমান সুযোগ দেয়ার কথা বলা হচ্ছে বহুদিন ধরে। ওটা তোমার কাজ নয়, তুমি পারবে না পৃথিবীর অনেক কিছু আজকাল বদলে গেছে। একসময় মেয়েদের বাইসাইকেল চালানো কটু চোখে দেখা হতো। আর এখন মেয়েরা বিমান চালাচ্ছে। ডা. ইশরাত শারমিন বলছেন, "বাংলাদেশে বাবা-মায়েরা মেয়ে শিশুদের সব কাজ করে দেন। এটা অতি-ভালবাসার কারণে হতে পারে, অথবা সে পারবে না -এই চিন্তা থেকেও হতে পারে। আগ বাড়িয়ে সব কিছু করে না দেয়া, এতে ভবিষ্যতে নিজে বুদ্ধি করে কিছু করার ক্ষমতা নষ্ট হয়। এই কারণেই হয়ত আমরা দেখি প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও অনেক কাজে তার সাথে একজন পুরুষ থাকে।" পরিবারে ছেলে ও মেয়েকে সমান সুযোগ দেয়ার কথা বলছেন ডা. শারমিন। "মেয়েটিকে একটা পর্যায় পর্যন্ত পড়িয়ে বিয়ে দিতে হবে, এটাই তার একমাত্র গন্তব্য, শুধুমাত্র এমন চিন্তা হয়ত অনেকেই আজকাল আর করেন না। কিন্তু ছেলের শিক্ষার জন্য বাড়তি কোচিং, তার ক্যারিয়ার তৈরিতে বাড়তি আশা এবং সেটি নিয়ে প্রকাশ্যে মেয়েদের সামনে আলাপ করা, এটিও মেয়ে শিশুদের মন ছোট করে এবং আত্মবিশ্বাস কমায়।" ভাল কাজের প্রশংসা আর ইতিবাচক চিন্তা করতে শেখানোর কথা বলছেন, ডা. শারমিন। "তুমি পারবে না, এসব না বলে বরং তার কোন সফলতাকে প্রশংসা করা ও পুরস্কৃত করা উচিৎ। তার সফলতাকে প্রশংসা করা উচিত। কোন কিছুতে ভাল না করলেও সেজন্য বকা না দিয়ে সে যে চেষ্টা করছে তার জন্যেও তাকে প্রশংসা করা উচিৎ।" কন্যা শিশুকে ইতিবাচক চিন্তা করতে শেখানোর কথা বলছেন তিনি। খেলাধুলা, শরীর চর্চা আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে। খাবার ও খেলার সাথে আত্মবিশ্বাসের সম্পর্ক ডা. রিয়াজ মোবারক বলছেন, "আমার কাছে সব শ্রেণীর বাবা-মায়েরা আসেন। ছেলে ও মেয়ে শিশুদের খাবারে পার্থক্য আজকাল আর আছে বলে আমার মনে হয় না। তবে কৈশোরে পিরিয়ডের জন্য মেয়েদের খাবার বেশি প্রয়োজন হয়। কারণ তখন অনেক সময় রক্ত স্বল্পতা হতে পারে। খাদ্য দিয়ে সেটা পূরণ করতে হয়।" পুষ্টিবিজ্ঞানী সৈয়দা শারমিন আক্তার বলছেন, খাবার কম খেলে চিন্তা করার ক্ষমতা কমে যায়। ডা. মোবারক আরও বলছেন, অনেক সময় মেয়েদের ভিটামিন ডি'র ঘাটতি হয় কারণ ছেলেরা বাইরে খেলা করে, তাদের বাইরে কাজে পাঠানো হয়, তারা রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে। ভিটামিন ডি হাড়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও আরও অনেক কিছুর জন্য দরকার। ডা. ইশরাত শারমিন বলছেন, বাইরে যেতে না দেয়ার কারণ হিসেবে অনেকেই বলেন গায়ের রঙ কালো হয়ে যাবে। সব ধরনের খেলনা ও খেলতে দেয়া বাংলাদেশে অনেক বাবা-মা মেয়ে শিশু ও ছেলে শিশুর জন্য যে খেলনা কেনেন, আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা যে খেলনা উপহার দেন - তাতেও নিজের সম্পর্কে শিশুর মনোভাব তৈরি হয়। "মেয়ে শিশুকে সব ধরনের খেলনা কিনে দিন। ক্রিকেট ব্যাট, সাইকেল, শুধু পুতুল আর রান্নার খেলনা নয়।" বলছেন ডা. ইশরাত শারমিন। একটা বয়সের পর বাংলাদেশে মেয়েদের খেলা বন্ধ হয়ে যায়। ডা. রিয়াজ মোবারক মনে করেন মেয়ে শিশুদের সব ধরনের খেলা ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে উৎসাহিত করতে দেয়া উচিত। "জিমে যাওয়া, সাতার কাটা এসব করতে দিলে সেটিও আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে। খেলাধুলা, শরীর চর্চা ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ আত্মবিশ্বাস ও নেতৃত্ব দেবার ক্ষমতা তৈরি করে।" বছর দুয়েক আগে সুইডিশ কিশোরী গ্রেটা থুনবার্গ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে পৃথিবী ও পরবর্তী প্রজন্মকে রক্ষায় বড়দের আরও অনেক বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালনের দাবিতে নিজের স্কুলের সামনে একা প্ল্যাকার্ড হাতে ধর্মঘটে বসেছিলেন। +text: জুলাইয়ে যুক্তরাজ্যে তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি করেছে একটি ব্রিটিশ সংস্থা। হরমুজ প্রণালী দিয়ে তেলবাহী আন্তর্জাতিক জাহাজের যাতায়াতের নিরাপত্তার বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় এবারের গ্রীষ্মে যুক্তরাজ্যে জ্বালানি তেলের দাম কিছুটা বাড়তি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে মোটরযান নিয়ে কাজ করা একটি ব্রিটিশ সংস্থা 'এএ'। যুক্তরাজ্য ইরানকে এর মধ্যে সতর্ক করে���ে যে আটক করা ব্রিটিশ জাহাজ স্টেনা ইমপেরো যদি ফেরত দেয়া না হয় তাহলে 'কঠোর ' কূটনৈতিক পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে ইরানকে। তেলের যোগান বাধাগ্রস্থ হলে গ্রাহক পর্যায়ে বিশ্বব্যাপী পেট্রোলের দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আরো পড়তে পারেন: ব্রিটিশ ট্যাংকার 'আটকের চেষ্টা চালালো ইরান' ইরান কেন ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়িয়েছে? 'যুদ্ধ বাধলে নিশ্চিহ্ন হবে ইরান', বলছেন ট্রাম্প ইরানের ওপর 'গুরুতর' নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা ট্রাম্পের জিব্রাল্টারে ইরানি তেলের ট্যাংকার আটকের প্রতিক্রিয়ায় ব্রিটিশ পতাকাধারী একটি তেলের ট্যাংকার আটক করে ইরান ইরান পরিস্থিতি কীভাবে তেলের দাম প্রভাবিত করতে পারে? জিব্রাল্টারে ব্রিটিশ সৈন্যদের দ্বারা ইরানের একটি তেলের ট্যাংকার জব্দ করার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইরান ব্রিটিশ পতাকাবাহী তেলের ট্যাংকার স্টেনা ইমপেরো আটক করে। এর আগে বেশ কয়েকমাস যাবত ইরান আর যুক্তরাষ্ট্র একে অপরের বিরুদ্ধে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে আগ্রাসী ব্যবহারের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ তুলে আসছিল। ঐ সময়ে হরমুজ প্রণালীতে ৬টি তেলের ট্যাংকারে আটকের ঘটনায় ইরানের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে দাবি করা হয়, যার ফলশ্রুতিতে ঐ অঞ্চলে মার্কিন ও ব্রিটিশ নৌবাহিনীর উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। হরমুজ প্রণালী দিয়ে পৃথিবীর এক পঞ্চমাংশ তেল সরবরাহ হয়। এখন এমনও আশঙ্কা করা হচ্ছে, ইরান হয়তো তাদের দক্ষিণ উপকূলে অবস্থিত হরমুজ প্রণালীই বন্ধ করে দেবে। হরমুজ প্রণালী কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি অঞ্চল, যার মাধ্যমে পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর সাথে জাহাজ চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে যাবে। যদি তাই হয়, তাহলে পৃথিবীর মোট তেলের মজুদের এক পঞ্চমাংশ এবং মোট প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদের এক চতুর্থাংশের সাথে বিশ্বের সংযোগ ছিন্ন হয়ে যাবে। অধিকাংশই মনে করেন, এই সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমেই পাওয়া সম্ভব। তবে ইরান যদি আসলেই প্রণালী বন্ধ করে দেয় (যেই হুমকি তারা এখনও দেয়নি), তাহলে তেলের দাম অনেকটা বৃদ্ধি পাবে - এরকম মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্যের চেম্বার অব শিপিংয়ের প্রধান ডেভিড বালস্টন। যুক্তরাজ্যের মোট তেলের ৫% এবং ১৩% প্রাকৃতিক গ্যাস হরমুজ প্রণালী হয়ে আসে জানিয়ে মি. বালস্টন বলেন, "হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলে যুক্তরাজ্যে তেল ও গ্যাসের দাম যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে।" আরো পড়তে ��ারেন: বরগুনা হত্যাকাণ্ড: মাদক, রাজনীতি আর ক্ষমতার চক্র ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত হচ্ছেন না রোনালদো প্রিয়া সাহাকে বরখাস্ত করলো ঐক্য পরিষদ ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ না করলে তেলের দাম খুব বেশি বৃদ্ধি পাবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা বর্তমানে তেলের দামের কী অবস্থা? গত কয়েক সপ্তাহে পারস্য উপসাগরে অস্থিরতার কারণে তেলের দাম সারা বিশ্বেই কিছুটা ওঠানামা করেছে, তবে তেরের দরের এই ওঠানামা খুব একটা বেশি পরিবর্তন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন আলফা এনার্জি গ্রুপ কনসাল্টেন্সি নামের একটি পরামর্শ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান জন হল। মি. হল মনে করেন তেলের বাজারের দামে খুব বেশি পরিবর্তন না আসার একটি কারণ ইরানের বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরে চলতে থাকা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকি, যেগুলো শেষ পর্যন্ত শুধু হুমকিই থেকে যায়। তবে পারস্য উপসাগরে অস্থিরতা বাড়লেও এবছর তেলের দামে খুব একটা পরিবর্তন হবে না বলে মনে করেন মি. হল। যুক্তরাষ্ট্রে তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি, চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীরগতির হওয়ায় তাদের তেলের চাহিদা কিছুটা কমে যাওয়া - এরকম কয়েকটি কারণে এবছর বৈশ্বিক বাজারে তেলের মজুদ বেশি থাকবে, যার ফলে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে। পারস্য উপসাগরে ইরানের কর্তৃপক্ষ ব্রিটিশ পতাকাধারী তেলের ট্যাংকার আটকের পর থেকে বিশ্বব্যাপী তেলের দাম কিছুটা ওঠানামা করছে এবং আশঙ্কা করা হচ্ছে যে তেলের দাম দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। +text: দুই পক্ষ একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের সাথে আলোচনার জন্য মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির দপ্তরের মন্ত্রী কিউ টিন্ট সোয়ে'র সাথে বৈঠক শেষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এই কথা জানান। মি. আলী বলেন প্রত্যাবসন প্রক্রিয়ার সার্বিক তত্বাবধানের জন্য দুই পক্ষ একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে। "জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের কম্পোজিশন(গঠন) কী হবে সেটা মিয়ানমার এবং বাংলাদেশ ঠিক করবে" বলেন তিনি। এই প্রত্যাবসন প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে সহায়তার লক্ষে বাংলাদেশ একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তির প্রস্তাব করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রী জানান "আমরা এই দ্বিপাক্ষিক চুক্তির একটা খসড়া তাদের কাছে (মিয়ানমারের মন্ত্রীর কাছ) হস্তান্তর করেছি"। মন্ত্রী জানান বৈঠকে সীমান্ত ও নিরাপত্তা সহযোগিতার বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। এবং বাংলাদেশ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি পুনব্যক্ত করেছে। "বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খুব শীঘ্রই মিয়ানমারে যাবেন বলে আশা করছি" বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। "উভয় পক্ষ শান্তিপূর্ণ উপায়ে এই সমস্যার সমাধান করতে চায়"। রোহিঙ্গাদের কবে ফিরিয়ে নেয়া হবে এবং কতদিন সময় লাগবে এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন "জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপে সেই বিষয় গুলো ঠিক করা হবে"। তবে এটা গঠনের কোন সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির যে খসড়া মিয়ানমারকে দেয়া হয়েছে তার বিষয়বস্তু কী সে বিষয়ে কিছু জানান নি তিনি। বৈঠক শেষে মিয়ানমারের তরফ থেকে কোন বক্তব্য দেয়া হয় নি। মিয়ানমার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়ার প্রস্তাব করেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী। +text: 'পার্বত্য অঞ্চলে আঞ্চলিক দলগুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোত চাঁদাবাজি এবং আধিপত্য বিস্তারে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় সেখানে হত্যাকান্ড বেড়েই চলেছে।' সোমবার সেখানে উপজেলা নির্বাচন শেষে এই সন্ত্রাসী হামলায় কমপক্ষে সাতজন নিহত হয় এবং গুরুতর আহত ১৫ জনকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এদিকে মঙ্গলবার রাঙামাটিতে আবার বন্দুকধারীর গুলিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একজন নেতা নিহত হয়েছেন। পার্বত্য অঞ্চলে সন্ত্রাসী হামলা এবং হত্যাকান্ড বেড়েই চলেছে, তা থামানো যাচ্ছে না কেন, সেই প্রশ্ন এখন উঠছে। ব্রাশফায়ারে হতাহতের ঘটনাটি ঘটেছিল রাঙামাটির বাঘাইছড়ির প্রত্যন্ত অঞ্চলে খাগড়াছড়ি জেলার সীমান্তের কাছে। পুরো এলাকায় নিরাপত্তা বাড়িয়ে এবং নিহতদের মৃতদেহ খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। যেভাবে বেঁচে গেলেন নির্বাচনী কর্মকর্তা ইয়াসমিন আকতার রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে উপজেলা নির্বাচন শেষে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের গাড়ির বহরে সেই হামলা চালানো হয়েছিল। তাতে প্রাণে বেঁচে গেছেন একজন নির্বচনী কর্মকর্তা বাঘাইছড়ির একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ইয়াসমিন আকতার। তিনি বলছিলেন, ভোটগ্রহণ এবং গণনা শেষে ফেরার পথে তারা এই ব্রাশফায়ারের মুখে পড়েছিলেন। "আমরা ওখানে তিনটি ভোটকেন্দ্রের নির্���াচনী কর্মকর্তাদের নিয়ে গাড়ি একসাথে ছাড়ে। যখন রওনা হয়েছি, বটতলা নয় কিলোমিটার নামে একটি জায়গায় আসি। সেখানে পাহাড়ের নীচ দিয়ে রাস্তা।ঐ পাহাড় থেকে হঠাৎ করে এমন ব্রাশফায়ারের শব্দ হচ্ছে। এই শব্দটা হচ্ছে, শিলা বৃষ্টি যেমন ঠাস ঠাস ঠাস ঠাস করে হয়, সে রকম শব্দ হচ্ছে।" "ঐ সময় আমরা সবাই যে যেভাবে পারছি, গাড়ির মধ্যে শুয়ে পড়ি। আর আমাদের গাড়ির চালক দ্রুত গাড়ি টান দিয়েছে। আমাদের সামনে ছিল বিজিবি'র গাড়ি। দ্বিতীয় গাড়িতে ছিলাম আমরা। তারপর তিন এবং চার নম্বরে যে গাড়িগুলো ছিল, সেই জিপ গাড়িগুলোর বেশি ক্ষতি হয়েছে। আমাদের গাড়িতেও চারজন পুলিশ ছিল। ওরাও আমাদের সাথে যে যেভাবে পারে, আমরা শুয়ে পড়ি। মানে, বাঁচলাম কোনোভাবে। আল্লাহই আমাদের বাঁচাইছে।" এই সন্ত্রাসী হামলার পরদিনই মঙ্গলবার আবার রাঙামাটির বিলাইছড়ি এলাকায় বন্দুকধারীর গুলিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সুরেশ কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা যে নিহত হন, দু'টো ঘটনার মধ্যে কোন যোগসূত্র আছে কিনা, তা পুলিশের কাছে এখনও পরিস্কার নয়। পাহাড় কেন অস্থিতিশীল? ২২ বছর আগে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের প্রথম দফার সরকারের সাথে শান্তি চুক্তি সই করেছিল। কিন্তু পাহাড় অস্থিতিশীল রয়ে গেছে। জনসংহতি সমিতির নেতা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমা। সে সময়ই চুক্তির বিরোধিতা করে ইউপিডিএফ নামে একটি সংগঠন আত্নপ্রকাশ করেছিল। এখন আঞ্চলিক দলগুলো আরও বিভক্ত হয়েছে। রাঙামাটি থেকে নির্বাচিত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেছেন, আঞ্চলিক দলগুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চাঁদাবাজি এবং আধিপত্য বিস্তারে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় সেখানে হত্যাকাণ্ড বেড়েই চলেছে। " সঙ্কটটা হচ্ছে অবৈধ অস্ত্র। অবৈধ অস্ত্রধারীদের চিহ্নিত করা না গেলে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নিলে এরকম ঘটনা ঘটতেই থাকবে। সুতরাং আমি মনে করি যে, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের প্রক্রিয়াটা চলুক। একইসাথে শান্তিচুক্তির বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া তরান্বিত করতে হবে।" "এরা আঞ্চলিক দলগুলো আদর্শের কথা যাই বলুক না কেন, এদের মুলটা হলো চাঁদাবাজি। এদেরকেও চিহ্নিত করে, চাঁদাবাজ হিসেবে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার।" তবে আঞ্চলিক দলগুলো এতদিন নিজেদের মধ���যে হামলার ঘটনাগুলো সীমাবদ্ধ রেখেছিল। শান্তিচুক্তির পর এই প্রথম নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ওপর হামলা: স্থানীয় একজন মানবাধিকার নিয়ে আন্দোলনকারি নেত্রী টুকু তালুকদার মনে করেন, এর মাধ্যমে হামলাকারীরা সরকারকে কোনো বার্তা দিতে চেয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে পর পর হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অনেক। আরো পড়তে পারেন: সড়ক দুর্ঘটনায় আবার ছাত্রের মৃত্যু, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী কি সত্যি জোয়ার তৈরি করতে পারবেন? বিশ্বের কোন শহরটি সবচেয়ে ব্যয়বহুল আর কোনটি সস্তা "যারা নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করে, এসব লোকদের ওপর এমন হামলা কখনও হয়নি। এটা আসলে তারা কি বোঝাতে চেয়েছে, সেটাও ভাবার বিষয়। আর সরকারের ওপর মানে এতজন সরকারের লোককে একসাথে মেরে ফেলা, এটাতো সরকারকে হুমকি দেয়া।" "পার্বত্য অঞ্চলে এপর্যন্ত যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে, সেগুলো কেউ কখনও স্বীকার করেনি। সবাই জানে, এটা ওপেন সিক্রেট। সবাই জানে এটা কখনও স্বীকার করা হয়নি।" এই মানবাধিকার নেত্রী আরও বলেছেন, "কথা হলো যে, হত্যাকান্ডগুলো ঘটে যাচ্ছে, সরকারও তদন্ত করছে, কিছু গ্রেফতার করছে। তারপর ঘটনা...। আমার মনে হয় যে, এ ধরণের বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে এমন ঘটনাগুলো ঘটছে। একটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ,আর যেহেতু তাদের কাছে অবৈধ অস্ত্র আছে, সাধারণ নিরীহ মানুষ তাদের কাছে জিম্মি হয়ে আছে।" বাঘাইছড়িতে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ওপর হামলার ঘটনার পেছেন কারা থাকতে পারে, এ ব্যাপারে পুলিশ এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি। তবে চুক্তি বিরোধী ইউপিডিএফ এর দিকে ইঙ্গিত করছে পুলিশ। এছাড়াও স্থানীয় একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনে রাঙামাটিসহ পার্বত্য অঞ্চলে জনসংহতি সমিতি বা আঞ্চলিক কোন দলের প্রার্থী বিজয়ী হয়নি।সেই রাজনীতিরও কোনো বিষয় আছে কিনা, সেই প্রশ্নও তাদের রয়েছে। এ ব্যাপারে ইউপিডিএফ এর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কি বলছে সন্তু লারমার দল? জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি উষাতুন তালুকদার বলছিলেন, "এটাতো এখন ধরেন, কোনদিকে কি খেলা হচ্ছে, সেটাতো বোঝা যায় না।" "বিশেষ করে ধরেন, আমরা যখন এসেছি, খুবই মনে প্রাণে এবং আন্তরিকতা সহকারে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নেত্রীর ওপর আস্থা বিশ্বাস রেখে আমরা কোনো তৃতীয় পক্ষ ছাড়াই চুক্তি করে এসেছি। আমরা আশা করি নাই যে, এখানে নতুন ক��ে এ ধরণের সংঘাত হবে। এটা ঘটনাক্রমে এ ধরণের অবস্থা দাঁড়াচ্ছে। আসলে চুক্তি বাস্তবায়ন করা হলে এখানে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।" চুক্তি বাস্তবায়ন না করার অভিযোগ সরকার মানতে রাজি নয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেছেন, "চুক্তি বাস্তবায়ন হচ্ছে। রাজনৈতিক দিক থেকে চুক্তি বাস্তবায়ন অব্যাহত থাকবে। আর অবৈধ অস্ত্র এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এবার প্রশাসন শক্ত ব্যবস্থা নেবে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করবে এবং ক্রিমিনালদের বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী যা কিছু করা দরকার, তাই করবে।" এদিকে, বাঘাইছড়িতে বন্দুকধারীদের গুলিতে হতাহতের ঘটনার ব্যাপারে রাঙামাটির জেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহতদের ময়না তদন্তের পর তাদের পরিবারের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। +text: হেপাটাইটিস ই ভাইরাস প্রায় দেড় মাস আগে থেকে হালিশহর এলাকায় পানিবাহিত নানা ধরনের রোগ ছড়াতে শুরু করে। জন্ডিস, টাইফয়েডসহ এসব পানিবাহিত রোগের পাশাপাশি হেপাটাইটিস ই' এর সংক্রমণ হচ্ছে- এরকম ধারনা থেকে আতঙ্ক সৃষ্টি হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। হেপাটাইটিস ই সংক্রমণের তথ্য নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী। তিনি বলেন, "হেপাটাইটিস ই সংক্রমণ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ঢাকা থেকে আসা টিম এবং এখানকার প্যাথলজিকাল সেন্টারে হালিশহর এলাকার যত রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে সেখানে প্রায় সবগুলোতেই হেপাটাইটিস ই পাওয়া গেছে।" যে কারণে হেপাটাইটিস ই সংক্রমণ টানা বৃষ্টিপাতের কারণে তৈরি হওয়া জলাবদ্ধতার কারণে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে বলে মনে করেন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী। চট্টগ্রাম শহরের আরো কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধতার সমস্যা থাকলেও বিশেষ কিছু কারণে হালিশহরে পানিবাহিত রোগের ব্যাপকতা বেশি বলে মনে করেন তিনি। মি. সিদ্দিকী বলেন, "হালিশহরের দুটো জিনিস অন্য জায়গা থেকে আলাদা। এখানকার লোকজনের অভিযোগ ওয়াসার পানিতে সমস্যা। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় পানির লাইনে লিকেজ আছে বলে বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন।" "এখানে জোয়ারের পানি আসে যা অন্য জায়গায় আসে না।" আরো পড়তে পারেন: বিদেশিদের জন্য ঢাকা নগরী কেন এত ব্যয়বহুল? 'তারা পাপ করেছে, আমি তো কোন ��ুল করিনি' গাজীপুর সিটি নির্বাচন: অনিয়মের নানা অভিযোগ চট্টগ্রামে এবারো জলাবদ্ধতার আশঙ্কা? খাল খননের জন্য রাস্তা খোড়াখুঁড়ি হচ্ছে বলে হালিশহর এলাকায় আরো বেশি হেপাটাইটিস ই সংক্রমণ হচ্ছে বলে জানান মি. সিদ্দিকী। তিনি বলেন, "আরেকটি অভিযোগ, যেটা সব জায়গাতেই রয়েছে, সেটা হলো মানুষজন পানির ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করে না।" স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা ওয়াসার সরবরাহ করা পানি দূষিত হওয়ার কারণে হেপাটাইটিস ই-এর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম ফজলুল্লাহর মতে, এই ধরনের রোগ ছড়ানোর প্রধান কারণ অপরিচ্ছন্নতা ও মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব। মি.ফজলুল্লাহ বলেন, "বর্ষার পানিতে ঐ এলাকার সমস্ত নালা নর্দমা ডুবে একাকার হয়ে যায়। সেসব পানিতে মশা-মাছি বসে এবং সেসব মশা মাছির মাধ্যমে রোগ ছড়াতে পারে বলে আমার ধারণা।" আরো পড়তে পারেন: উত্তর কোরিয়ার রহস্যময় এক হোটেলের কাহিনী মিয়ানমারের অন্যতম শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা বরখাস্ত সুস্বাস্থ্যের জন্য দিনে কতটা ঘুম দরকার ভারতে সরকার কেন এসি-র তাপমাত্রাও বেঁধে দিচ্ছে নিয়মিত পানির ট্যাঙ্ক পরিষ্কার না করাও পানিবাহিত রোগ সংক্রমণের অন্যতম প্রধান কারণ বলে মনে করেন মি. ফজলুল্লাহ। "আমরা সবাইকে বলেছি পানির ট্যাঙ্ক চার মাস পরপর পরিষ্কার করতে। নিজেরা পরিষ্কার করতে না পারলে ওয়াসাকে জানাতেও বলা হয়েছে। বিনামূল্যে আমরা ঐসব ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করবো।" "তারপরও অধিকাংশ বাড়ির পানির ট্যাঙ্কই বছরের পর বছর পরিষ্কার করা হয় না। অনেকে জানেও না শেষ কবে ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করা হয়েছিল", জানান মি.ফজলুল্লাহ। পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় যেন কোনো ত্রুটি না থাকে সেবিষয়ে ওয়াসা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলে নিশ্চিত করেন মি. ফজলুল্লাহ। তিনি জানান ওয়াসা বিভিন্ন এলাকা থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করছে। "পানির নমুনায় যদি কোনো রকম সমস্যা থাকে তাহলে যা যা করা দরকার আমরা করবো। পানিতে ক্লোরিন বাড়িয়ে দেয়া, লাইনগুলো পরিষ্কার করা এধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।" হালিশহর এলাকায় পানির লাইনে লিকেজ আছে কিনা তা'ও খুঁজে দেখা হবে বলে জানান মি. ফজলুল্লাহ। তিনি জানান, আক্রান্ত এলাকার মানুষদের সচেতন করতে পত্রিকায় বিজ্ঞাপণ দেয়া এবং স্কুল-কলেজে গিয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে ওয়াসার পক্ষ থেকে। রোগ প্রতিরোধে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবাদান, পানি বিশুদ্ধকরণ বড়ি বিতরণ ও প্রচারণাসহ নানা ধরণের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগও। চট্টগ্রামের হালিশহরের জলাবদ্ধতার চিত্র হেপাটাইটিস ই আসলে কতটা ক্ষতিকর? চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, হেপাটাইটিস ই অন্যান্য হেপাটাইটিসের মত মারাত্মক নয়। হেপাটাইটিস বি অথবা সি আক্রান্ত হলে যতটা মৃত্যুর ঝুঁকি তৈরি হয়, হেপাটাইটিস ই-র কারণে সেরকম ঝুঁকি সৃষ্টি হয় না। তবে গর্ভবতী মায়েদের জন্য এই রোগ বেশ ক্ষতিকর হতে পারে, বলেন মি. সিদ্দিকী। প্রতি পাঁচজনে একজন গর্ভবতী মা মারা যায় হেপাটাইটিস ই'তে। মি. সিদ্দিকী জানান, এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে জন্ডিসের মতই লক্ষণ দেখা যায়। খাওয়ায় অরুচি, বমি করা, চোখ হলুদ হওয়া, গায়ের রঙ হলুদ হওয়া, প্রস্রাব অতিরিক্ত হলুদ হওয়া এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ। মি. সিদ্দিকী বলেন, "শুরুতে জন্ডিসের পরীক্ষাই করা হয়। তারপর কোন ধরনের হেপাটাইটিস তা জানার জন্য পরীক্ষা চালানো হয়।" এই রোগের প্রতিরোধের একমাত্র উপায় নিরাপদ পানির ব্যবহার নিশ্চিত করা। মি.সিদ্দিকী বলেন, "শুধু খাবার পানির বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করলেই হবে না; তৈজসপত্র ধোয়া, গোসল করা এবং অন্যান্য ব্যবহারের পানিও যেন বিশুদ্ধ হয় সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।" মি.সিদ্দিকী বলেন, সব ধরনের পানি ফুটিয়ে ব্যবহার করলে হেপাটাইটিস ই সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে না। এছাড়া পানি বিশুদ্ধ করতে হালিশহরে এলাকায় স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। অনেক সময় পচা-বাসি খাবার খেলেও হেপাটাইটিস ই সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে বলে জানান মি.সিদ্দিকী। বাংলাদেশের বন্দরনগরী চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকায় পানিবাহিত রোগ, বিশেষ করে হেপাটাইটিস ই সংক্রান্ত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে। +text: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মিডিয়ার বৈরি সম্পর্ককে অনেকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তাঁর প্রশাসনের সাথে গণমাধ্যমের যে সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, তা গত বহু বছরে অন্য কোন মার্কিন প্রশাসনের সাথে দেখা যায়নি। যদিও এই বৈরিতার সম্পর্কের কিছু ফায়দা যে গণমাধ্যমের পক্ষে যাচ্ছে না তা নয়, বরং অনেকেই একে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন। ডোনাল���ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হবার এক সংবাদ সম্মেলনে মিডিয়ার ওপর চড়াও হয়েছেন,আর এরই মধ্যে সেই সংবাদ সম্মেলন অনেকটা কিংবদন্তির রূপ নিয়েছে । মি: ট্রাম্পের বিপক্ষে যায় এমন সংবাদ প্রচারের জন্য মার্কিন নেটওয়ার্ক সিএনএনকে 'মিথ্যুক' বলে আক্রমণ করছেন তিনি, যদিও তার বেশ আগেই স্পষ্ট হয়ে গেছে যে শত্রুদের একহাত দেখে নিতে কতটা ভালবাসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার সমাবেশে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে সম্মানিত পত্রিকা, নিউ ইয়র্ক টাইমসকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি। মি: ট্রাম্প বলেছেন নিউ ইয়র্ক টাইমসেরও সিএনএন-এর মতো অবস্থা। "সুখবর হলো এরা বেশিদিন ব্যবসা করতে পারবে না। দেখেছেন তারা কিভাবে হারছে"-বলেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তবে নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রধান নির্বাহী মার্ক থম্পসন বলছেন, "হারাতো দূরের কথা, নির্বাচনের পর থেকে নিউ ইয়র্ক টাইমসের ডিজিটাল গ্রাহকের সংখ্যা এখন আকাশচুম্বী।" "প্রেসিডেন্ট যেভাবে অব্যাহতভাবে মূলধারার গণমাধ্যমকে ব্যর্থ বলে বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন এবং আমাদের মিথ্যা সংবাদ বলে আখ্যায়িত করছেন, তাতে বরং লাখ-লাখ মানুষ যারা কিনা আগে পয়সা দিয়ে আমাদের সংবাদ পড়তো না, তারা এখন আমাদের গ্রাহক হচ্ছে। মি: ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বিভিন্ন ধরনের বিক্ষোভ হচ্ছে "ফলে শুধু রাজনৈতিক দিক থেকে নয়, শুধুমাত্র ব্যবসায়িক দিক থেকে দেখলেও এই ট্রাম্প যুগ মানসম্পন্ন সাংবাদিকতার জন্য খুবই ভালো একটি সময়" বলছেন নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রধান নির্বাহী মার্ক থম্পসন । হোয়াইট হাউজের সংবাদ সম্মেলন এখন ট্রাম্প প্রশাসন এবং মূলধারার গণমাধ্যমের মাঝে একটি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র শন স্পাইসার যুক্তরাষ্ট্রে সরকার এবং গণমাধ্যমের মধ্যে যে সম্পর্ক তাকে সম্পূর্ণ উল্টে দিতে চাইছেন। তিনি বলছেন, গণমাধ্যম যেমন মি. ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডের ব্যখ্যা চাইবে, তেমনি সরকারও গণমাধ্যমের কাছে তাদের কর্মকাণ্ডের ব্যখ্যা চাইতে ছাড়বে না। যদিও সরকারের এসব হুমকিকেও ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন কেউ কেউ। যেমন বাজফিড নিউজের বিশেষ প্রতিবেদক জেমস পলের মতে "রেটিংয়ের জন্য মি. ট্রাম্প খুবই ভালো। মানুষ যখন দু:শ্চিন্তায় থাকে তখন তারা সংবাদের দিকে অনেক বেশি লক্ষ্য রাখে।" "আমি নিশ্চিত যে, সিএনএনের নাম বারবার আসায় তারা বরং খুশিই হচ্ছে। ট্রাম্প�� কিন্তু সংবাদের খুব ভালো একজন ভোক্তা। তিনি একদম নিয়মিত সিএনএন দেখেন, তিনি নিউ ইয়র্ক টাইমস পড়েন, নিউ ইয়র্ক পোস্ট পড়েন।" "যাদেরকে তিনি শত্রু মনে করেন, তাদের প্রতি তার সবসময় লক্ষ্য থাকে এবং তাদের সাথে কথাও বলেন। পাঠকরাও কিন্তু তার যেকোন বিষয়ে অনেক আগ্রহী"-বলছেন মি: পল। জেমস পলের মতে ট্রাম্প এবং গণমাধ্যম আগামী চার বছরের জন্য একটি সম্পর্কে বাঁধা পড়েছে। যদিও এটা অনেকটা নির্যাতনমূলক সম্পর্ক এবং বিষয়টি স্বাস্থ্যকর নয়। মি: ট্রাম্প তার সমর্থকদের প্রতি বারবার আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন মূলধারার পত্রিকা কিংবা টিভি সংবাদমাধ্যমের কোন কথাই বিশ্বাস না করে। কিন্তু যদি একটি দেশের অর্ধেক মানুষ গণমাধ্যমের ওপর আস্থা না রাখে, তাহলে সাংবাদিকদের কী করার আছে? আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের এক নারীর কানে আটকা পড়েছিল অজগর প্রবীণ রাজনীতিক সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত প্রয়াত 'ক্যান্সার হবার পর থেকে সংসার বলতে কিছুই নাই' নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রধান নির্বাহী মার্ক থম্পসন মনে করেন এই ট্রাম্প যুগ মানসম্পন্ন সাংবাদিকতার জন্য খুবই ভালো একটি সময়। সিটি ইউনিভার্সিটি অফ নিউ ইয়র্কে সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক জেফ জার্ভিস বলছেন "সাংবাদিকদের এখন তাদের কাজ নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে।" "এই সময়টা একজন সাংবাদিকের জন্য খুবই উত্তেজনাকর একটি সময়, কারণ এখন ভালো সাংবাদিকতা খুবই জরুরী। অন্যদিকে, দেশের অর্ধেক মানুষ আমাদের বিশ্বাস করে না, তারা আমাদের কথা শোনে না।" "আমি এটাও বলবো যে, আমাদের মধ্যে যথেষ্ট আত্মসমালোচনাও নেই। আমাদের এখন মানুষের কাছে সাংবাদিকতা নিয়ে যেতে হবে। তারা যেটা বলছে সেটার সাথে তথ্য যুক্ত করতে হবে, সেই আলোচনার সাথে একটি মূল্য যোগ করতে হবে এবং নতুন উপায়ে তাদের আস্থা অর্জন করতে হবে"-বলেছেন অধ্যাপক জেফ জার্ভিস। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তাঁর সমর্থকেরা গণমাধ্যমের ওপর একটি দানবীয় চরিত্র আরোপ করতে চাইছেন। যদিও এর মাধ্যমে হয়তো তারা যেই শিল্পকে নিষ্ঠুরভাবে আক্রমণ করে যাচ্ছেন, সেই শিল্প এখন নতুন করে প্রাণ পাচ্ছে। মার্কিন নির্বাচনের প্রচারণা থেকে শুরু করে প্রেসিডেন্ট হবার পরও ডোনাল্ড ট্রাম্প মূলধারার গণমাধ্যকে তুলোধুনো করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। +text: নতুন দফায় শুল্ক আরোপের ফলে মার্কিন-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে দুই অর্থনৈতিক মহাশক্তির সাম্প্রতিক দ্বন্দ্ব চলাকালীন অবস্থায় চীনের বিরুদ্ধে আরোপ করা সবচেয়ে বড় আকারের শুল্কের সিদ্ধান্ত ছিল এটি। ২০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক আরোপের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে চীনের অন্যায্য বাণিজ্য নীতিকে। চীন এই সিদ্ধান্তের বিপরীতে ৬০ বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের মার্কিন পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে। চীনের ভাষ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্র 'আন্ত:দেশীয় অর্থনীতিতে সর্বকালের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য যুদ্ধ' শুরু করেছে। এবিষয়ে আরো পড়তে পারেন: চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধ: আপনার কি কিছু এসে যায়? চীন-আমেরিকা বাণিজ্য যুদ্ধ, জিতবে কে? চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধ: সঙ্কটের মুখে চীনা শিল্প? জুলাইয়ে শুল্ক আরোপ শুরু হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের এই সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে মোট ২৫০ বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হলো। সোমবার থেকে কী কার্যকর হচ্ছে? যেসব চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, কোনো মার্কিন প্রতিষ্ঠান সেসব পণ্য আমদানি করতে চাইলে ১০% অতিরিক্ত শুল্ক প্রদান করতে হবে। যেসব পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে তার মধ্যে চামড়ার হ্যান্ডব্যাগ অন্যতম প্রায় ৬ হাজার পণ্যের ওপর এই শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন থেকে এত বেশি পণ্যের ওপর কখনো এত বড় মাপের শুল্ক আরোপ করা হয়নি। হ্যান্ডব্যাগ, চাল ও কাপড়ের ওপর এই শুল্ক আরোপিত হবে। তবে স্মার্ট হাতঘড়ি ও চেয়ারের মত পণ্য শুল্কের আওতায় পরবে না। দুই দেশের মধ্যে কোনো সমঝোতা না হলে ২০১৯'এর শুরু থেকে এই শুল্কের হার ২৫% এ উন্নীত হবে। এর বিপরীতে ছোট আকৃতির মার্কিন বিমান, কম্পিউটার ও টেক্সটাইল পণ্যের ওপর ৫% অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে চীন। রাসায়নিক দ্রব্য, মাংস, গম ও ওয়াইনের ওপর আরোপ করা হয়েছে ১০% শুল্ক। এখন পর্যন্ত কী হয়েছে? এবছর এখন পর্যন্ত তিন দফায় মোট ২৫০ বিলিয়ন ডলারের চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। জুলাইয়ে ৩৪ বিলিয়ন ডলারের চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেয় হোয়াইট হাউজ। এরপর গত মাসে দ্বিতীয় দফায় ১৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্যের ওপর ২৫% শুল্ক আরোপ করা হয়। প্রতিশোধস্বরূপ, ৫০ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করে চীন। বিশেষত ঐসব পণ্যে, যেসব পণ্যে শুল্ক আরোপ করলে মার্��িন কৃষকরা - যাদের সিংহভাগই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক - সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: ক্ষমতাসীনদের অধীনে নির্বাচনে রাজি ড. কামাল বাংলাদেশ দলের 'আফগানিস্তান ভীতি' কেটেছে? পে-প্যাল, স্ক্রি-প্যাল কি আসছে বাংলাদেশে? মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যুক্তরাষ্ট্র কেন শুল্ক আরোপ করছে? প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন তিনি 'চীনে মার্কিন প্রযুক্তি ও মেধা সম্পদের অন্যায্য হস্তান্তর' বন্ধ করতে এবং নিজদেশে কর্মসংস্থান সংরক্ষণ করার উদ্দেশ্যে এই ধরণের শুল্ক আরোপ করছেন। অর্থনৈতিক মূলনীতি অনুযায়ী, শুল্ক আরোপ করার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রাহকদের জন্য আমদানিকৃত চীনা পণ্যের চেয়ে মার্কিন পণ্য বেশি সস্তা হবে। কাজেই তারা আমদানিকৃত পণ্য না কিনে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পণ্যই কিনতে চাইবেন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ঘরোয়া অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে ও দেশের অভ্যন্তরে ব্যবসা প্রসার লাভ করবে। কিন্তু এর ফলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির অফিসে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে ঘরোয়া অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে সংরক্ষণবাদী বাণিজ্য নীতি অনুসরণ করেছেন মি. ট্রাম্প; যা যুগযুগ ধরে চলতে থাকা বৈশ্বিক মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থার পরিপন্থী। এরপর কী হতে পারে? সম্প্রতি মি. ট্রাম্প বলেছেন আরো ২৬৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্যের ওপর 'স্বল্প সময়ের নোটিশে' শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। এর ফলে, কার্যত, চীনের সব পণ্যের ওপরই শুল্ক আরোপ করা হয়ে যাবে। তবে দীর্ঘমেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক নীতির বিরুদ্ধে চীন কী ভূমিকা গ্রহণ করবে, তা পরিষ্কার নয়। চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্র যে পরিমাণ পণ্য কেনে, সে তুলনায় অনেক কম পরিমাণ পণ্য চীনের কাছে বিক্রি করে তারা। কাজেই খুব বেশি মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করার সুযোগও নেই চীনের সামনে। তবে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, চীন ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বাণিজ্য যুদ্ধ চালাতে পারে। চীনে অবস্থিত মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কড়াকড়ি আরোপ করতে পারে তাঁরা। রপ্তানি বাড়াতে কমিয়ে আনতে পারে নিজেদের মুদ্রার মূল্যমানও। চীনা পণ্যের ওপর তৃতীয় দফায় মার্কিন শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে আজ থেকে। +text: প্রতিনিধিদলের সদস্যদের সঙ্গে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী মোদী এই ইউরোপীয় এমপিদের বেশির ভাগই বিভিন্ন কট্টর দক্ষিণপন্থী দলের রাজনীতিবিদ, আর কাশ্মীরে পা রাখার আগে তারা গতকাল দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও দেখা করে এসেছেন। এই সফরকে অবশ্য তাদের 'ব্যক্তিগত সফর' বলেই বর্ণনা করা হচ্ছে, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে তারা কাশ্মীরে আসেননি। কিন্তু ভারতের বিরোধী দলগুলি প্রশ্ন তুলছে যেখানে ভারতের বিরোধী নেতাদেরই কাশ্মীরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না, সেখানে কীভাবে এই এমইপি-রা সেখানে ঘুরে দেখার অনুমতি পেলেন? এদিকে এই সফর থেকে শেষ মুহূর্তে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া একজন ব্রিটিশ এমইপি-ও আজ এই সফরকে একটি 'পিআর স্টান্ট' বলেই বর্ণনা করেছেন। শ্রীনগরের রাস্তায় ইউরোপীয় এমপিদের কনভয়। ২৯ অক্টোবর, ২০১৯ বস্তুত মাস-তিনেক আগে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার পর আজই প্রথম ভারত সরকার সেখানে কোনও বিদেশি প্রতিনিধিদলকে পা রাখতে দিল। এই দলের ২৭ জন সদস্যর মধ্যে ২২ জনই অবশ্য ইউরোপের বিভিন্ন কট্টর দক্ষিণপন্থী দলের হয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে নির্বাচিত। তাদের মধ্যে ফ্রান্সে জঁ মারি লঁ পেনের প্রতিষ্ঠিত দলের ছ'জন, পোল্যান্ডের একটি উগ্র দক্ষিণপন্থী দলের পাঁচজন, ব্রিটেনের ব্রেক্সিট পার্টির চারজন - এবং ইটালি, জার্মানি, চেক, বেলজিয়াম ও স্পেনের কট্টর দক্ষিণপন্থী দলগুলোরও এক বা একাধিক সদস্য আছেন। এই রাজনৈতিক দলগুলো তাদের অভিবাসন-বিরোধী নীতির জন্য, কয়েকটি তো আবার কট্টর ইসলামোফোবিক বা মুসলিম-বিরোধী বিবৃতির জন্যও সুপরিচিত। তারা কাশ্মীরের পথে রওনা হওয়ার আগে গতকালই এই ইউরোপীয় এমপিদের সঙ্গে দিল্লিতে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। শ্রীনগরে নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়ছে যুবকরা। ২৯ অক্টোবর, ২০১৯ পাকিস্তানের নাম না-করে তিনি সেখানে বলেন, "সন্ত্রাসবাদকে যে সব দেশ রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে অনুসরণ করছে তাদের জন্যই গণতন্ত্র আজ হুমকির মুখে - এবং ভারত ও ইউরোপ উভয়েই তার ভুক্তভোগী।" প্রধানমন্ত্রী মোদী ও ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকের পরই এই এমইপিরা আজ (মঙ্গলবার) শ্রীনগরের বিমান ধরেন। প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য ব্রিটেনের লি��ারেল ডেমোক্র্যাটস দলের রাজনীতিবিদ বিল নিউটন ডান বলেন, "আমি চাই কাশ্মীরের বাস্তব পরিস্থিতি স্বচক্ষে দেখতে, এবং সেখানকার স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলতে।" "কাশ্মীরে স্বাভাবিক পরিস্থিতি দ্রুত ফিরে আসুক, মানুষ ভালভাবে দিন কাটাক - এটাই সকলের প্রত্যাশা" বলেও তিনি মন্তব্য করেন। ইউরোপীয় এমপিদের অবশ্য কাশ্মীর ঘুরে দেখানো হয়েছে অনেকটা সরকারি 'গাইডেড ট্যুরে'র মতোই। শ্রীনগরের দুটি হোটেলে তাদের সঙ্গে স্থানীয় কয়েকজন রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও ধর্মীয় নেতার বৈঠকেরও ব্যবস্থা করা হয় বলে জানা যাচ্ছে। ভারত-শাসিত কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও এখন বন্দী, মেহবুবা মুফতির মেয়ে ইলতিজা অবশ্য মনে করছেন না এই বিদেশি অতিথিদের সফরে কাশ্মীরের কোনও লাভ হবে বলে। তিনি বিবিসিকে বলেন, "এই সফর তখনই অর্থবহ হবে যদি তারা মেহবুবা, ওমর আবদুল্লা বা ফারুক আবদুল্লার মতো সাবেক মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন।" "এবং সেই সঙ্গে এই মুহুর্তে কাশ্মীরে বন্দী-থাকা শত শত রাজনীতিবিদ ও আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।" ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা আনন্দ শর্মা আবার এই সফর আপত্তি তুলছেন অন্য যুক্তিতে। গাড়ির ভেতরে ইউরোপীয় এমপিরা। শ্রীনগর, ২৯ অক্টোবর ২০১৯ তার বক্তব্য, "যেখানে দেশের বিরোধী নেতাদের শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, সেখানে এই বিদেশি এমপিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে এসে আসলে ভারতের সাংবিধানিক গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বেরই অমর্যাদা করা হচ্ছে।" কাশ্মীরে সুশীল সমাজসহ সব পক্ষের সঙ্গে দেখা করার প্রথম অধিকার যে তাদেরই, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যে ব্রিটেনের লিবডেম দল থেকে নির্বাচিত এমইপি ক্রিস ডেভিস জানিয়েছেন, সেনা পাহারায় নয় - কাশ্মীরে তিনি স্বাধীনভাবে ঘোরাঘুরি করে মানুষের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এটা জানানোর পরই না কি ভারত সরকার তার কাছ থেকে সফরের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করে নিয়েছিল। ফলে কাশ্মীরে এমইপিরা গিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তাদের সফর বিতর্ক থামানোর বদলে আসলে আরও উসকে দিচ্ছে। ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পরিস্থিতি সরেজমিনে ঘুরে দেখতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ২৭ জন সদস্য আজ মঙ্গলবার সেখানে গিয়ে পৌঁছেছেন। +text: . তবে মার্গারেট থ্যাচারের মত তাকে নির্বাচন করতে হয়নি। হয়তো সেই দুর্বলতা ঘোচাতে হঠাৎ করে ৮ই জুন সাধারণ নির্বাচনের ডাক দেন তিনি। তখন থেকে একজন দক্ষ এবং শক্ত মনের রাজনীতিকের একটি ইমেজ তুলে ধরার চেষ্টা করে গেছেন টেরেজা মে। তবে টেরেজা মে'র শক্ত মানসিকতা নিয়ে কনজারভেটিভ পার্টিতে সবসময় কম-বেশি কথাবার্তা সবসময়ই ছিলো। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যমেরনের মন্ত্রিসভায় তিনি যখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন, তখন আরেক মন্ত্রী তার সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন -"সাংঘাতিক কঠিন মহিলা।" দলের অনেকে বলেন তিনি 'অনমনীয়' ধরনের। টেরেজা মে এখন এসব বিশ্লেষণকে প্রশংসা হিসাবে বিবেচনা করছেন এবং ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি বলার চেষ্টা করে গেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ প্রত্যাহার নিয়ে দেন-দরবারের সময় তিনি শক্ত হাতে ব্রিটেনের স্বার্থরক্ষায় লড়বেন। আর তাতেই ডানপন্থী মিডিয়ার প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠেন তিনি। স্বামী ফিলিপের সাথে লন্ডনের কাছে সাসেক্স কাউন্টির ইস্টবোর্ন শহরে একজন পাদ্রীর ঘরে জন্ম হয় টেরেজা ব্রেইজারের। চার্চের স্কুলে পড়াশোনা শুরু। হাইস্কুলে পড়ার সময় শনিবারে একটি বেকারিতে কাজ করে হাতখরচা চালাতেন। তার স্কুলের কয়েকজন বন্ধু পরে বলেছেন, লম্বা সুশ্রী ফ্যাশন প্রিয় টেরেজা তখন থেকে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। স্কুল শেষে ভর্তি হন অক্সফোর্ড বিশ্বদ্যিালয়ে যে প্রতিষ্ঠানটি ব্রিটেনের রাজনীতিক নেতৃত্ব তৈরির ক্ষেত্রে ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ১৯৭৬ টেরেজা মে'র প্রেম শুরু হয় স্বামী ফিলিপ মে'র সাথে। বয়সে দু বছরের ছোট ফিলিপ মে তখন অক্সফোর্ড ছাত্র সমিতির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। কনজারভেটিভ পার্টির সাথে সম্পর্কিত কনজারভেটিভ অ্যাসোসিয়েশনের এক অনুষ্ঠানে তাদের দুজনের মধ্যে পরিচয় ঘটিয়ে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত বেনজির ভুট্টো। তিনিও তখন অক্সফোর্ডের ছাত্রী। দুজনেই পরে বলেছেন - প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়েছিলেন তারা। পরে ১৯৮০ তে বিয়ে করেন। টেরেজা মে অবশ্য বলেছেন শিশু বয়সে প্রধানমন্ত্রী হতে চাইতেন তিনি, কিন্তু সত্যি সত্যি সেরকম কোনো উচ্চাভিলাষ তার সেভাবে ছিলনা। ১৯৮০ তে বিয়ে রাজনীতিতে অভিষেক অক্সফোর্ড থেকে বেরিয়ে ব্রিটেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বেশ কিছুদিন কাজ করেছেন। কিন্তু রাজনীতিই যে তার গন্তব্য সেটা কখনই ভোলেননি তিনি��� প্রথম নির্বাচন করেন দক্ষিণ লন্ডনের মার্টন এলাকায় স্থানীয় সরকারের একজন কাউন্সিলর পদে। প্রায় দশ বছর ধরে কাউন্সিলর ছিলেন। প্রথম এমপি নির্বাচনে দাঁড়ান ১৯৯২ সালে ডারহাম কাউন্টির একটি আসনে। অনেক ভোটে হেরে যান। দু বছর পর পূর্ব লন্ডনের বার্কিং এলাকায় একটি উপনির্বাচনে আবার দাঁড়ান। আরো খারাপ পরাজয় হয়। দু হাজারেরও কম ভোট পান সেই নির্বাচনে। ১৯৮২ তে প্রথমবার এমপি নির্বাচন করেন তেরেজে মে অপ্রত্যাশিত সাফল্য আসে ১৯৯৭ সালের নির্বাচনে। টনি ব্লেয়ারের নেতৃত্বে লেবার পার্টি যখন ব্যাপকভাবে জিতে ক্ষমতায় আসে, কনজারভেটিভ পার্টির সেই ক্রান্তিকালে লন্ডনের কাছে মেইডেনহেড এলাকা থেকে আশাতীতভাবে জিতে যান টেরেজা মে। তখন থেকে সেই সিটে তিনি বার বার জয় পেয়ে আসছেন। দু বছর পর ১৯৯৯ তে দলের ছায়া সরকারে জায়গা করে নেন তিনি। ২০০২ তে তিনিই প্রথম নারী যিনি কনজারভেটিভ পার্টির চেয়ারম্যান হন। সে সময় আরো বেশি নারীকে যেন মনোনয়ন দেয়া হয়, তার জন্য দলের ভেতর লড়েছেন তিনি। তবে পর পর তিন দফা হেরে 'নটিং হিল সেট' নামে কনজারভেটিভ পার্টির যে কজন নেতা শেষ পর্যন্ত দলকে ক্ষমতায় নিয়ে আসেন -- যাদের নেতৃত্বে ছিলেন ডেভিড ক্যামেরন এবং জর্জ অজবর্ন -- তাদের মধ্যে জায়গা পাননি টেরেজা মে। তবে ২০০৯ সালে কনজারভেটিভদের নেতৃত্বে কোয়ালিশন সরকারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান টেরেজা মে। অনেক বাঘা বাঘা রাজনীতিক যখন এই মন্ত্রণালয়ে এসে হিমশিম খেয়েছেন, সেখানে টেরেজা মে শক্ত হাতে সামলেছেন তার দায়িত্ব। জুতোর প্রতি আকর্ষণ রয়েছে টেরেজা মে'র শক্ত ব্যাক্তিত্ব তার স্পষ্টভাষী অনমনীয় স্টাইলের কারণে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা সহ মন্ত্রীসভার অন্যান্য সদস্যদের সাথে ঠোকাঠুকি লাগলেও, সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা পান তিনি। কোয়ালিশন সরকারের শরীক দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির তৎকালীন মন্ত্রী ডেভিড ল তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন - "অভিবাসন ইস্যুতে তার (টেরেজা মে) সাথে জর্জ অজবর্নের (অর্থমন্ত্রী) হরহামেশা ঝগড়া হতো .. এমনকী প্রধানমন্ত্রী ক্যমেরন এবং টেরেজা মে পরস্পরকে সন্দেহের চোখে দেখতেন। আমি ভাবতাম তিনি দু বছরের বেশি টিকবেন না।" ক্যামেরনের মন্ত্রিসভায় জায়গা করে নিয়েছিলেন টেরেজা মে সামাজিক অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে কনজারভেটিভ পার্টির কট্টর অংশের সাথ��� তার বিরোধ হয়েছে। একবার এক দলীয় সম্মেলনে টেরেজা মে বলেছিলেন, মানুষ এখনও তাদের 'নাস্টি পার্টি" অর্থাৎ স্বার্থপর হৃদয়হীন দল হিসাবে দেখে। এ ধরনের কথা পছন্দ করেননি দলের অনেকে। পুলিশকে সন্দেহবশত তল্লাশির অধিকার দেওয়ার বিরোধিতা করেছেন তিনি। ব্রিটেনে মুসলিম সমাজে শারিয়া আইনের প্রচলনের বিরুদ্ধাচরণ করেছেন। ডেভিড ক্যামেরন সরকারের সময় কল্যাণভাতা অতিমাত্রায় কমানোর বিরোধিতা করেছেন। অর্থাৎ দলের ভেতরে সবসময় পালে হাওয়া লাগিয়ে চলেননি টেরেজা মে। ৮ই জুনের নির্বাচনের আগে তার সেই স্বাধীনচেতা সাহসী শক্ত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বিষয়টি ভোটারদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন তিনি। টেরেজা মে গত জুলাইতে যখন ক্ষমতা নেন, মার্গারেট থ্যাচারের পর তিনিই হন ব্রিটেনের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী। +text: বাংলাদেশের পাসপোর্ট মি. মোমেন বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে বাংলাদেশ কোন ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করছে না। আগের পাসপোর্টে ইসরায়েলে ভ্রমণের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ ছিল। কিন্তু নতুন ই-পাসপোর্টে সেই কথাটি বাদ দেওয়া হয়েছে। পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েলের নাম বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের বক্তব্যের যৌক্তিকতা এবং ইসরায়েলের প্রতি বাংলাদেশের অবস্থান নমনীয় হচ্ছে কীনা-এসব প্রশ্নে ব্যাপক আলোচনা চলছে। বাংলাদেশের পাসপোর্টে এই পরিবর্তনের বিষয়টি এমন সময় জানা গেলো, যখন সারা বিশ্বে ফিলিস্তিনি ইস্যুতে নতুন করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে, বাংলাদেশ-সহ বিভিন্ন দেশে ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। বাংলাদেশের পাসপোর্টে সব সময়েই ইসরায়েলের নাম উল্লেখ করে বলা হতো, এই দেশ ছাড়া আর সব দেশ ভ্রমণের জন্য পাসপোর্টটি বৈধ। কিন্তু বাংলাদেশের নতুন ই-পাসপোর্টে 'ইসরায়েল ব্যতীত' অংশটি বাদ দিয়ে বলা হয়েছে বিশ্বের 'সব দেশের' ক্ষেত্রে এটি বৈধ। সাবেক একজন কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, যে সময়ে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে, এই সময় বেছে নেয়াটা ঠিক হয়নি। ফিলিস্তিন ইসরায়েল লড়াই কেন বাইডেনের বড় মাথাব্যথার কারণ ইসরায়েল ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বদলায়নি, বলছে বাংলাদেশ সরকার তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, ছয় মাস আগে নতুন পদ্ধতির ই-পাসপোর্টে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। একইসাথে তিনি অভিযোগ করেছেন, কোন মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিষয়টিকে নিয়ে নানা আলোচনা চালাচ্ছে। "নিউজটা বের করেছেন এমন সময়, যখন ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের মধ্যে সংঘাতটা হলো। সেটা যখন তুঙ্গে, এই সময় কোন স্বার্থন্বেষীমহল এটা জোরেশোরে তুলে ধরলেন। কবে আমরা এটা করেছি। আর হঠাৎ করে এটা নিউজ হয়ে আসলো" বলেন মি: মোমেন। তিনি আরও বলেছেন, "আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতে কোন পরিবর্তন নাই। উই ওয়ান্ট টু স্টেট সল্যুশন। প্যালেস্টাইন তার ১৯৬৭ সালের ম্যাপ অনুযায়ী তাদের স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হবে জেরুসালেমকে রাজধানী করে। এটাই আমরা বিশ্বাস করি, মনে প্রাণে বিশ্বাস করি। এটাই আমরা প্রমোট করি।" তবে দেশের ই পাসপোর্টে যে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে, সে ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কিন্তু আগে কোন বক্তব্য বা ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি। ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যখন বাংলাদেশের পাসপোর্টের পরিবর্তনের বিষয় তুলে ধরে টুইট করা হয়, তার জবাবে গত রোববার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বক্তব্য দেয়া হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মি: মোমেন সাংবাদিকদের কাছে গত রোববার প্রথমে বলেছিলেন, বিষয়টি শোনার পরে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোন করে জানতে পারেন যে, ছয় মাস আগে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও বিবিসিকে বলেছেন, এই পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে এক বছর আগে এবং তা বাস্তবায়ন শুরু করা হয়েছে ছয় মাস আগে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমিন মনে করেন, বিষয়টা কার্যকর করার ক্ষেত্রে সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের কারণেও নানা প্রশ্ন উঠেছে। "সেখানে সমন্বয়ের একটা অভাব আছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই কাজটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে করতে পারতো। এখানে ভীষণ ঘাটতি ছিল।" এ কে আবদুল মোমেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২সালে স্বাধীন বাংলাদেশে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকার লিখিতভাবে ইসরায়েলের স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যান করেছিল। সেই থেকেই বাংলাদেশ অবস্থান রয়েছে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের পক্ষে। তবে গত কয়েক বছরে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অবস্থানের পরিবর্তন হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাহরাইন ইসরায়েলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে পাসপোর্টে পরিবর্তনের ফলে ইসরায়েলে প্রতি বাংলাদেশের নমনীয় অবস্থানের ইঙ্গিত কীনা- সেই প্রশ্নও উঠেছে। আরও পড়ুন: ইসরায়েল-ফিলিস্তিন প্রশ্নে ডেমোক্র্যাট শিবিরে গভীর পরিবর্তন গুগল ম্যাপে গাযার স্যাটেলাইট ছবি কেন ঝাপসা সাবেক একজন পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলেছেন, কোন ইঙ্গিত থাকলেও বাংলাদেশের বাস্তবতায় অদূর ভবিষ্যতে কূটনৈতিক নীতিতে বড় পরিবর্তন সম্ভব নয়।ত তিনি বলেন,"ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন আবার ইসরায়েলের সাথে সম্পর্কতো অনেকে করছে। আমার মনে হয় না, বাংলাদেশ এমুহুর্তে সেটা করছে। এ ব্যাপারে আমি সরকারি ভাষ্যকেই বিশ্বাস করছি যে এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ইসরায়েলে সাথে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার জন্য এগুবে না।" তিনি বলেছেন, "যদি বলেন, একটু নমনীয় হওয়া কীনা-হতে পারে। কারণ যাদের সাথে সংঘাত, সেখানে আরবদেশগুলোকে যদি একসাথে ধরি, তাহলে তারাইতো নমনীয় ভূমিকা নিচ্ছে। তাদেরকে সমর্থন করেইতো আমরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ভূমিকা নিয়েছিলাম। কাজেই পাসপোর্টে পরিবর্তনকে অনেকে নমনীয়তার ইঙ্গিত মনে করতে পারেন। কিন্তু এতে কূটনৈতিক ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন হয় না।" বাংলাদেশের পাসপোর্টে আগে ইসরায়েলের পাশাপাশি তাইওয়ান এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা ছিল। অনেক আগেই সেই নিষেধাজ্ঞার তালিকা থেকে তাইওয়ান এবং দক্ষিণ আফ্রিকার নাম বাদ দেয়া হয়েছে। তৌহিদ হোসেন বলেছেন, "এক সময় ছিল তাইওয়ানে যাওয়া যেত না। পাসপোর্টে সেটা বাদ দেয়ায় এখন তাইওয়ানে যাওয়া যায়। তাইওয়ানকে তো আমরা এখনও স্বীকৃতি দেইনি। তবে এখন প্রয়োজনে এবং ব্যবসায়িক কারণে অনেকে তাইওয়ান যান। এক সময় হয়তো ইসরায়েলের সাথে বাংলাদেশের সে রকম একটা যোগাযোগ হতে পারে। সেটা সময় বলবে।" ই-পাসপোর্টে প্রচলিত ব্যবস্থার মতো ভিসা নিতে হবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের বক্তব্য হচ্ছে, পাসপোর্টে ইসরায়েলের প্রসঙ্গ বাদ দেয়া হলেও দেশটিতে বাংলাদেশিরা যেতে পারবেন না। "যেহেতু ঐ দেশ (ইসরায়েল) আমাদের দ্বারা স্বীকৃত না। আমরা তাদের (ইসরায়েলকে) দেশ হিসাবে স্বীকৃতি দেই না। সেজন্য আমরা কোনভাবেই কাউকে সেখানে যাওয়ার সুযোগ দিতে পারবো না।" তিনি উল্লেখ করেছেন, ফিলিস্তিন এবং মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে বাংলাদেশের যে নীতি আছে, তাতে বাংলাদেশ অটল অবস্থানেই থাকবে। পাসপোর্টে ইসরায়েলের প্রসঙ্গ বাদ দেয়ার ঘটনাকে তিনি প্রশাসনিক এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার বিষয় বলে তুলে ধরেন। কিন্তু ই-পাসপোর্ট প্রথমদিকে যাদের দেয়া হয়েছে, তখন ইসরায়েলের প্রসঙ্গ বাদ দেয়া হয়নি। বাংলাদেশের পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সাবেক একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ই-পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার বিষয়টি ইসরায়েলের নাম উল্লেখ থাকা বা না থাকার ওপর নির্ভর করে না বলে তিনি মনে করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশের নতুন পাসপোর্টে ইসরায়েলের নাম বাদ দেওয়া হলেও দুটো দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকার কারণে বাংলাদেশিরা ইসরায়েলে যেতে পারবে না। +text: সম্প্রতি ক্রিকেটারদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান ঢাকায় সচিবালয়ে সাকিব আল হাসানের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কিত যে খবর গণমাধ্যমে আসছে সে বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন বিষয়টি নিয়ে তিনি ক্রিকেট বোর্ডের সাথে তিনি কথা বলেছেন। "তারা আশ্বস্ত করেছে যে আজকের মধ্যেই এ বিষয়টি তারা আইসিসির কাছে লিখবে এবং আশা করছি আজই জানা যাবে যে আসলে কি হতে যাচ্ছে"। সাকিব আল হাসান আর বিসিবির দিকেই দৃষ্টি সবার জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, ক্রিকেট বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে আইসিসির সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে বিষয়টি দ্রুত সুরাহা করে। "সাকিবের কারণে দল ঘোষণা একটু পিছিয়ে গেছে। কারণ সাকিব থাকলে দল একরকম হবে আর না থাকলে আরেক রকম হবে। এটা দ্রুত সমাধান না হলে ভারত সফর নিয়ে সংশয় থাকবেই । তবে আশা করি এটা দ্রুত কেটে যাবে"। প্রতিমন্ত্রী বলেন ক্রিকেটারদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার সাথে সম্পর্ক নেই। "আসলে এটা অনেক দিনে ধরেই নাকি চলছিলো। খেলোয়াড়রা অবগত করেনি। আমার অজানা ছিলো। ক্রিকেট বোর্ড জানিয়েছে অনেক দিন ধরেই হচ্ছে। পত্রিকা দেখে বোর্ডের সাথে কথা বলেছি। বোর্ডও বলেছে তারা জানতেন না। সাকিব হয়তো হালকা ভাবে নিয়েছে। এটা যে এতদূর গেছে সেটা কেউ বুঝতে পারেনি"। তিনি বলেন, "কোনো কঠোর সিদ্ধান্ত আসলে আমরা সাকিবের পাশে থাকবো তবে আমাদের হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই আইসিসির বিষয় বলে। তবে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ে রেখেছি যাতে সুষ্ঠুভাবে সমাধান করা যায়"। ওদিকে বিসিবি সভাপতি নাজ���ুল হাসান পাপন সাংবাদিকদের বলেছেন সাকিব ইস্যুতে আইসিসি এখনো বিসিবিকে কিছু জানায়নি। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: সাকিবই বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার? সাকিবের তর্কের ভিডিও ভাইরাল: কী বলছেন তিনি ধর্মঘটে ক্রিকেটাররা, বেতন বৃদ্ধিসহ ১১ দাবি ক্রিকেটে ধর্মঘট: এখনো 'কোন পক্ষেই নেই' মাশরাফী বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেছেন, আইসিসির সিদ্ধান্ত যাই হোক তারা সাকিব আল হাসানের পাশেই থাকবেন। +text: স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গঠন পানি বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন গবেষকরা স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে একজন মানুষের 'ওয়াটার ফুটপ্রিন্ট' সর্বোচ্চ ৫৫% পর্যন্ত কম হতে পারে বলা হয় ঐ গবেষণায়। ইতালি, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের মানুষের খাদ্যাভ্যাসের ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে এই গবেষণা। একদিনে একজন মানুষের মোট ব্যবহৃত পানি ও তার জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সবধরনের পণ্য ও সেবা উৎপাদনে যে পরিমাণ পানি ব্যবহৃত হয় তার যোগফলকে সাধারণত ঐ ব্যক্তির 'ওয়াটার ফুটপ্রিন্ট' হিসেবে প্রকাশ করা হয়। শুধু খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমেই ওয়াটার ফুটপ্রিন্ট অনেকাংশে কমিয়ে আনা যায়। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: নতুন মাদক 'খাট': মানবদেহের জন্য কতোটা ভয়াবহ জামাতকে 'নেয়া যাবে না' বিরোধীদলের যুক্তফ্রন্টে বাংলাদেশেই সবচেয়ে দ্রুত বাড়ছে 'অতি ধনীর' সংখ্যা গবেষকরা বলছেন স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ব্যক্তিকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি খাদ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত পানির পরিমাণ কমানোর পেছনেও ভূমিকা রাখে। ইউরোপিয়ান কমিশনের জয়েন্ট রিসার্চ সেন্টারের গবেষক ডেভি ভ্যানহাম বলেন, "মূল বার্তাটি হচ্ছে, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত হলে শুধু যে আপনি সুস্থ থাকবেন তা'ই নয়, তখন আপনার প্রয়োজনীয় খাদ্য উৎপাদনে গড়ে আগের চেয়ে কম পানি প্রয়োজন হওয়ার কারণে আপনার ওয়াটার ফুটপ্রিন্টও কমে যাবে।" স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ব্যক্তিকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি খাদ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত পানির পরিমাণ কমানোর পেছনেও ভূমিকা রাখে গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য ·যুক্তরাজ্যে মানুষের খাদ্য গ্রহণের (দেশে উৎপাদিত ও রপ্তানিকৃত) বিপরীতে ওয়াটার ফুটপ্রিন্টের পরিমাণ জনপ্রতি দিনে ২,৭৫৭ লিটার। জার্মানিতে যা ২,৯২৯ লিটার ও ফ্রান্সে ৩,৮৬১ লিটার। ·মাংস ও ��ব ধরণের খাদ্য উপাদান সহ নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের ফলে খাবার উৎপাদনে পানির ব্যবহার ১১-৩৫% পর্যন্ত কমানো যেতে পারে। ·খাদ্য তালিকায় মাংস বাদ দিয়ে মাছ ও তেলবীজ জাতীয় খাদ্যকে প্রাধান্য দিয়ে খাদ্য তালিকা তৈরি করলে পানি ব্যবহারের মাত্রা ৩৩-৩৫% পর্যন্ত কমানো যেতে পারে। ·স্বাস্থ্যকর নিরামিষাশী আহারের ফলে পানি ব্যবহারের হার ৩৫-৫৫% পর্যন্ত কমানো যেতে পারে। পূর্ণ নিরামিষাশী আহারের অভ্যাসের ফলে 'ওয়াটার ফুটপ্রিন্ট' সবচেয়ে বেশী মাত্রায় কমানো সম্ভব পৃথিবীতে সুপেয় পানির উৎস দিনদিন কমে আসছে। আর দ্রুতবেগে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জীবনধারার পরিবর্তন ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই সমস্যা আরো প্রকট আকার ধারণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন কীভাবে পানি বাঁচাবে? পানি ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার জন্য পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই নানা ধরণের প্রচারণা চালানো হয়। কিন্তু খাদ্য উৎপাদনে কি পরিমাণ পানি ব্যবহৃত হয় সেবিষয়ে যথেষ্ট পরিমাণ সচেতনতা তৈরি হয়নি মানুষের মধ্যে। ফলমূল ও শাকসবজি উৎপাদনে মাংস জাতীয় খাবার উৎপাদনের তুলনায় অনেক কম পানি ব্যবহৃত হয় পশুপালনে বিপুল পরিমাণ পানি প্রয়োজন হয়। তেল, চিনি ও চর্বিজাতীয় খাবার উৎপাদনেও অনেক পানি প্রয়োজন হয়; কিন্তু ফলমূল ও শাকসবজি উৎপাদনে পানি ব্যবহৃত হয় অপেক্ষাকৃত কম। মানুষের বর্তমান খাদ্যাভ্যাস ও গবেষকদের সুপারিশকৃত খাদ্যাভ্যাসে সাপেক্ষে খাদ্য উৎপাদনের সাথে সংশ্লিষ্ট পানি ব্যবহারের মাত্রার তারতম্য পর্যালোচনা করে তৈরি করা হয়েছে গবেষণাটি। তবে গবেষকরা স্বীকার করেন যে মানুষকে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনে অনুপ্রাণিত করা মোটেও সহজ কাজ নয়। মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্য অস্বাস্থ্যকর খাবারে উচ্চমাত্রায় শুল্ক আরোপ সহ সবধরনের খাদ্যের গুণাগুণ সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করার মত নান পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে বলে সুপারিশ করেন গবেষকরা। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, শরীরের গঠন অনুপাতে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। +text: আন্তর্জাতিক আদালতে অং সান সু চি এই আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে গণহত্যা, ধর্ষণ ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে ��০১৭ সালের আগস্ট মাসে চালানো এক সেনা অভিযানে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নিহত হয় এবং ৭ লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। অং সান সু চি বলেন, মামলায় যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা ''অসম্পূর্ণ এবং বেঠিক''। তার কথায়, ওই সেনা অভিযানের পেছনে গণহত্যা চালানোর অভিপ্রায়ের কোন প্রমাণ নেই। মিজ সু চি বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের পরিস্থিতি উপলব্ধি করা সহজ নয়, এবং ২০১৭ সালের আগস্টের ঘটনাবলী শুরু হয়েছিল যখন স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো পুলিশ ফাঁড়ির ওপর আক্রমণ চালায়। তবে তিনি স্বীকার করেন, মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা বাহিনী হয়তো মাত্রাতিরিক্ত রকমের শক্তি প্রয়োগ করে থাকতে পারে। মিজ সু চি আরো বলেন, যদি মিয়ানমারের সৈন্যরা যুদ্ধাপরাধ করে থাকে তাহলে তাদের বিচার করা হবে। জাতিসংঘের আদালত কক্ষে অং সান সু চি বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: হেগের আদালতে শুনানি শুরু, রোহিঙ্গা শিবিরে দোয়া রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার: পাথরের মতো বসে ছিলেন সু চি গণহত্যার স্বীকৃতি দিন: সু চি'র উদ্দেশ্যে নোবেলজয়ীরা তিনি আরো বলেন, মিয়ানমার রাখাইন প্রদেশের বাস্তুচ্যুত মানুষদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ। অং সান সু চি বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রধান বাসভূমি রাখাইন প্রদেশে গোলযোগের ইতিহাস কয়েক শতাব্দীর, এবং এ সংঘাতকে আরো গভীর করতে পারে এমন কিছু না করতে আইসিজে'র প্রতি আহ্বান জানান তিনি। ওআইসির সদস্য রাষ্ট্র গাম্বিয়ার করা এই মামলায় অভিযোগ করা হয় যে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী সেদেশের রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যা, ধর্ষণ ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। মিয়ানমারে গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ সংগ্রামের কারণে নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া অং সান সুচি, এক সময় ছিলেন আন্তর্জাতিকভাবে নন্দিত ব্যক্তিত্ব - কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুতে তার ভূমিকার কারণে সেই তিনিই বিশ্বের বহু দেশের নিন্দা ও ধিক্কারের পাত্র হন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মিজ সু চিকে দেয়া সম্মাননা প্রত্যাহার করে নেয়। গণহত্যার মামলায় আন্তর্জাতিক আদালতে মিজ সুচির হাজিরাকে তাই এক নাটকীয় ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছিল। তার আগমন উপলক্ষে দ্য হেগে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: ১৫ মাসের জন্য বাংলাদেশে এসে ৫০ বছর কাটালেন বিপিএলের বাণিজ্য: সফল নাকি ব্যর্থ যুক্তরাজ্য ��ির্বাচন: ইসলাম ও ইহুদি বিদ্বেষ যখন ইস্যু শাড়ি পরে নোবেল নিলেন এসথার, ধুতি পরে অভিজিৎ মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে তার দেশের বিরুদ্ধে আনা গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। +text: টেলিফোন হটলাইনে সরাসরি অভিযোগ করা যাবে। আপনার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চালিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কমিশন সরকারকে সুপারিশ করবে। কমিশন আশা করছে, আগামী মার্চ মাস থেকে ১৬১০৮ নাম্বারটি চালু হবে এবং এই টেলিফোনের কল করার জন্য অভিযোগকারীকে কোন অর্থ দিতে হবে না। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বিবিসি বাংলাকে বলেন, এর আগে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগগুলোর সিংহভাগ আসতো পরোক্ষভাবে, যেমন সংবাদমাধ্যমে বা মানবাধিকার কর্মীদের মাধ্যমে। তারা এখন চাইছেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো ভিকটিম বা তার পক্ষে কারো কাছ থেকে সরাসরি গ্রহণ করতে। কীভাবে কাজ করবে টেলিফোন হটলাইন? অভিযোগকারী মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ জানানোর জন্য ১৬১০৮ নাম্বারটিতে ফোন করার পর কমিশনের একজন কর্মকর্তা তার কাছ থেকে বিস্তারিত জানাবেন। গুমের শিকার ব্যক্তিদের জন্য এখনও অপেক্ষা করছেন স্বজনেরা। আরও দেখুন: অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবারে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে বহিস্কৃত স্কুল ছাত্রের গুলিতে নিহত ১৭ প্রশ্নপত্র ফাঁস: কীভাবে ঠেকানো যাবে প্রযুক্তি দিয়ে? অভিযোগ যাচাই বাছাইয়ের পর সেটি সম্পর্কে কমিশনের তরফ থেকে তদন্ত চালানো হবে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে মানবাধিকার কমিশন থেকে পুলিশ বা অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিংবা সরকারের অন্য বিভাগকে আইনগত পদক্ষেপ নিতে সুপারিশ করবে। অভিযোগকারী অনলাইনের মাধ্যমে এই অভিযোগের তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে পারবেন। এই সেবা চালু হওয়ার পর ভবিষ্যতে জেলা পর্যায়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভিকটিম সরাসরিভাবে মানবাধিকার কমিশনের কাছে অভিযোগ করতে পারবে। কিন্তু মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী শক্তিধর হলে অভিযোগকারীর নিরাপত্তা কে দেবে? এই প্রশ্নের জবাবে কমিশনের চেয়ারম্যান মি. হক বলেন, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য পুলিশ, র‍্যাবসহ নানা ধরনের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নিরাপত্তা প্রদানের প্রাথমিক দায়িত্ব তাদের বলে তিনি উল্লেখ করেন। বাংলাদেশে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ, গুম ও গুপ্ত হত্যার ঘটনায় দেশটির মানবাধিকার পরিস্থিতি 'চরম উদ্বেগজনক' পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে অভিযোগ করেছে মানবাধিকার কর্মীরা। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র বলছে, ২০১৭ সালে এক বছরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ কিংবা রহস্যজনক নিখোঁজ হয়েছে মোট ৯১ জন। কাজী রিয়াজুল হক, চেয়ারম্যান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এর মধ্যে ফিরে এসেছেন বা খোঁজ পাওয়া গেছে মাত্র ২৬ জনের। সাবেক রাষ্ট্রদূত থেকে শুরু করে রাজনীতিক, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ কেউই গুম কিংবা নিখোঁজের তালিকা থেকে বাদ যায়নি বলে তারা বলছে। এসব ঘটনা রোধ করার প্রশ্নে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের 'নিষ্ক্রিয় ভূমিকা' নিয়েও মানবাধিকার আন্দোলনকারীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে। বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোন ঘটনা আপনার নজরে পড়লে এবার আপনি সরাসরি তা টেলিফোন হটলাইনের মাধ্যমে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে জানাতে পারবেন। +text: শিশুদের জঙ্গি সহিংসতার খবর কীভাবে দিবেন। সহিংস সন্ত্রাসী হামলা সংক্রান্ত খবর শিশুদের জানানোর ক্ষেত্রে সাধারণত অভিভাবকরা যেসব দ্বন্দ্বের মধ্যে থাকেন - আমি কী খবরটা তাদের কাছ থেকে গোপন করবো? তাদেরকে খবরের বিষয়ে জানতে না দেয়ার চেষ্টা করাই কি সবচেয়ে সহজ পন্থা? নাকি ঠিক যা ঘটেছে তাই আমার সন্তানদের জানাবো? খবরের বিষয়ে কথা বলুন এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এধরণের বিষয় এড়িয়ে যাওয়ার চেয়ে শিশুদের সাথে খোলামেলাভাবে কথা বলাই বেশি কার্যকর। ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে বন্দুকধারীর হামলার ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ছিলেন কয়েকজন শিশু। এছাড়াও অনেক শিশুই এই হামলার ঘটনায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাবিত হয়েছে। মনোবিজ্ঞানী এমা সাইট্রন, যিনি শিশুদের মানসিকতা ও মানসিক আঘাত বিষয়ের বিশেষজ্ঞ, মনে করেন এ ধরণের ঘটনা সম্পর্কে শিশুদের সাথে কথা বলার বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয়। "ঘটনা সম্পর্কে শিশুদেরকে জানানো, এবিষয়ে তাদের প্রশ্নের উত্তর দেয়া এবং তাদের কৌতুহল নিবৃত্ত করতে যা আলোচনা করা প্রয়োজন সেসম্পর্কে দ্বিধা করা উচিত নয়।" "তাদের পাশে থাকুন এবং তাদের আশ্বস্ত করুন, তাদের আলিঙ্গন করুন, তারা কাঁদলে প্রয়োজনে তাদের সাথে কাঁদতেও দ্বিধা করবেন না। যেভাবে তারা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে, ঠিক সেভাবেই তাদের সাথে ব্যবহার করুন।" মিজ. সাইট্রন বলেন, "আ���াদের জানা প্রয়োজন শিশুরা এরকম একটা ঘটনা ঘটলে কী জানতে চায়, কী ধরণের প্রশ্নের উত্তর চায়।" আরো পড়তে পারেন: 'অন্যদের বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন দিলেন আমার স্ত্রী' অস্ত্র আইনের সংস্কার মন্ত্রিসভায় অনুমোদন নয় মিনিট আগে হামলার তথ্য পাঠিয়েছিলেন ব্রেন্টন বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে শিশুদের কাছ থেকে এরকম খবর গোপন করার চেষ্টা আসলে সময়োপযোগী কোনো পদক্ষেপ নয়। টেলিভিশন কি বন্ধ করে দেয়া উচিত? কোনো সহিংস সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটলে শিশুদের কাছে যেন সহিংসতার চিত্র না পৌঁছায়, সে উদ্দেশ্যে টেলিভিশন বা রেডিও বন্ধ করে দেয়া খবুই স্বাভাবিক একটি প্রতিক্রিয়া। তবে লন্ডনের রয়্যাল কলেজ অব সাইকিয়াট্রির চিকিৎসক বার্নাডকা ডুবিকা মনে করেন, বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে শিশুদের কাছ থেকে এরকম খবর গোপন করার চেষ্টা আসলে সময়োপযোগী কোনো পদক্ষেপ নয়। "বর্তমান যুগে অভিভাবকরা এধরণের খবর শিশুদের কাছ থেকে পুরোপুরি লুকিয়ে রাখতে পারবেন না। বাস্তবতা হলো, সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে শিশু আর তরুণরা ২৪ ঘন্টাই খবর সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকে।" মিজ. ডুবিকা বলেন শিশূদের কাছ থেকে অভিভাবকরা কোনো খবর গোপন করলে পরে যখন শিশুরা ঐ খবর সম্পর্কে জানতে পারে, তখন অভিভাবকরা তাদের (শিশুদের) শতভাগ সহায়তা করতে সক্ষম হয় না। রগরগে বিবরণ এড়িয়ে চলুন শিশুদের সাথে সহিংসতার ঘটনা নিয়ে আলোচনা করা যেমন জরুরি, তেমনি তাদেরকে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়ার ক্ষেত্রেও অভিভাবকদের সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত বলে মনে করেন মিজ সাইট্রন। "শিশুদের সহিংসতার ঘটনা জানানোর সময় রগরগে বিবরণ এড়িয়ে চলুন, এটা অপ্রয়োজনীয়।" "রক্তাক্ত ঘটনা, সহিংসতার বিস্তারিত বিবরণ দেয়া, ছবি বা ভিডিও দেখে কীরকম অনুভূতির জন্ম নেয় - শিশুদের এমন বর্ণনা দেয়া থেকে বিরত থাকুন। এধরণের বর্ণনা শিশুদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে।" মিজ সাইট্রন মনে করেন, শিশুদের মধ্যে যাদের বয়স একটু বেশি, অনলাইনে খবরের কতটুকু তাদের দেখা উচিত সেবিষয়ে তাদের (শিশুদের) সাথে প্রয়োজনে কিছুটা রুক্ষ আচরণও করতে পারে অভিভাবকরা। মিজ সাইট্রন বলেন, "আমাদের পরিবারের কমবয়সীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এটি খুবই জরুরি।" সঠিক ভাষার ব্যবহার মিজ সাইট্রন বলেন, এরকম সহিংস কোনো আক্রমণ বিষয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে অভিভাবকদের উচিত শিশুদের আলোচনার কেন্দ্রে গিয়ে আলোচনার নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করা। কিন্তু এক্ষেত্রে তাদের (অভিভাবকদের) ধীর-স্থির থাকা এবং তাদের আশ্বস্ত করে, এমন ভাষা ব্যবহার করা উচিত। "সাধারণ কিছু কথা এরকম ক্ষেত্রে যা শিশুদের আশ্বস্ত করতে পারে। যেমন, 'এটি খুবই বিরল একটি ঘটনা' বা 'এখন নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আরো কড়াকড়ি আরোপ করা হবে'।" "আমরা চাই না আমাদের শিশুরা ঘরের বাইরে যেতে ভয় পাক। আমরা চাই না যে তারা বড় হয়ে স্বাভাবিক ও সুস্থ জীবনযাপনের ক্ষেত্রে ভীতির সম্মুখীন হোক," বলেন মিজ. সাইট্রন। কিন্তু শিশুর জিজ্ঞেস করতে পারে - 'এমন ঘটনা কি আবার ঘটবে'? সেক্ষেত্রে কী করবেন? মিজ সাইট্রন বলেন, "এরকম ক্ষেত্রে শিশূদের সত্য বলা উচিত, কিন্তু পাশাপাশি তাদের আশ্বস্ত করাও জরুরি।" অর্থাৎ শিশুদের বোঝানো উচিত যে এমন ঘটনা আবারো ঘটতেই পারে কিন্তু সেটিও হবে খুবই অপ্রত্যাশিত। পাশাপাশি তাদের আশ্বস্ত করা প্রয়োজন যে ভবিষ্যতে নিরাপত্তা ব্যভস্থা আরো জোরদার থাকবে, সুতরাং এমন ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা আরো কম থাকবে। শিক্ষকদের ভূমিকা কী হওয়া প্রয়োজন? যুক্তরাজ্যের স্কুল ও কলেজের নেতৃবৃন্দের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব স্কুল অ্যান্ড কলেজ লিডার্সের সাধারণ সম্পাদক জেফ বার্টন মনে করেন, এরকম ঘটনার ক্ষেত্রে স্কুলগুলোর অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধ প্রচার করা প্রয়োজন। অর্থাৎ সহিংস সন্ত্রাসী হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসাম্প্রদায়িকতার চর্চা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন স্কুল কর্তৃপক্ষের। কীভাবে বুঝবেন আপনার সন্তান মানসিক আঘাতপ্রাপ্ত কি-না? মানসিক আঘাতের চিহ্নগুলো একেক ব্যক্তির ক্ষেত্রে একেকভাবে প্রকাশ পায়। তবে মানসিক আঘাতের ক্ষেত্রে সাধারণত শিশুরা যেভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে থাকে, সেগুলো হলো: তবে এরকম ক্ষেত্রে অভিভাবকদের অতিরিক্ত চিন্তিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক বার্নাডকা ডুবিকা। মিজ. ডুবিকা বলেন, "কিশোর-তরুণদের সিংহভাগই এরকম ঘটনার পর নিজেদের খাপ খাইয়ে নেবে এবং কিছুদিনের মধ্যেই স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করবে।" আরো পড়তে পারেন: ক্রাইস্টচার্চ হামলা: প্রতিরোধের চেষ্টা চালিয়েছিলেন যারা ক্রাইস্টচার্চ হামলা: হতাহতদের সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে 'কী দেখেছি তা বর্ণনা করার মতো না' যে কোনো সন্ত্রাসী হালার খবর সবসময়ই ভীত��কর। কিন্তু অভিভাবকদের জন্য এরকম খবর বাড়তি চিন্তার কারণ তৈরি করে। কারণ সন্তানদের কাছেও ঐ খবর সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে হয় তাদের। +text: জুনায়েদ বাবুনগরী (ফাইল চিত্র) আহ্বায়ক কমিটিরও প্রধান হয়েছেন বিলুপ্ত কমিটির আমির জুনায়েদ বাবুনগরী। রাত সাড়ে তিনটার দিকে এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে হেফাজতে ইসলামের নেতা নুরুল ইসলাম জিহাদি আহ্বায়ক কমিটির ঘোষণা দেন। এরপর সকালে একটি সংবাদ বিবৃতির মাধ্যমে জানানো হয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সংখ্যা তিনজন। বাকী দুজন সদস্য হচ্ছেন: বিবৃতিতে বলা হয়, "চলমান অস্থির ও নাজুক পরিস্থিতি বিবেচনায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ও মহানগর কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণা পরবর্তী উপদেষ্টা কমিটির পরামর্শেক্রমে ৩ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হলো"। সদস্য সচিব মি. জিহাদি ভিডিও বার্তায় বলেছেন, এই আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে হেফাজতে ইসলামের যাবতীয় কর্মসূচী পরিচালিত হবে। সংগঠনের লিখিত বিবৃতিতে আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সংখ্যা তিন জন উল্লেখ করা হলেও মি. জিহাদি তার ভিডিও বার্তায় সদস্যের সংখ্যা ৫ জন বলে উল্লেখ করেছেন। বাকী দুজন সদস্যের নাম তিনি উল্লেখ করেন, সালাউদ্দিন নানুপুরি এবং মিজানুর রহমান চৌধুরী। এদের দুজনকেই অরাজনৈতিক সদস্য হিসেবে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মি. জিহাদি। যে কারণে কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত রবিবার রাত এগারোটার সময় প্রকাশ করা এক সংক্ষিপ্ত ভিডিও বার্তায় হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন সংগঠনটির আমীর জুনায়েদ বাবুনগরী। এই সিদ্ধান্তের পেছনে কারণ হিসেবে মি. বাবুনগরী 'দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায়' নেয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। তার ব্যক্তিগত একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে ভিডিও বার্তার সত্যতা নিশ্চিত করেন। সম্প্রতি হেফাজতের নেতাদের গ্রেপ্তার অভিযানের মুখে সংগঠনটির পক্ষ থেকে সরকারের সাথে একটি সমঝোতা চালানোর চেষ্টা হচ্ছিল। সংগঠনটির অনেক নেতাই এই সমঝোতার চেষ্টার কথা গত কয়েকদিন নানাভাবে তুলে ধরেছেন। এখন অনেকটা আকস্মিকভাবেই সংগঠনের আমির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। জুনায়েদ বাবুনগরী ভিডিও বার্তায় বলেন, "দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় অরাজনৈতিক সংগঠন এবং দ্বীনি সংগঠন হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটিকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের পরামর্শক্রমে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হল"। তবে তিনি বলেছেন, "আগামীতে আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে আবার হেফাজতে ইসলামের কার্যক্রম শুরু হবে"। অবশ্য এই ভিডিও প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেই আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হলো। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের সময়, গত ছাব্বিশে মার্চ থেকে তিন দিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংস বিক্ষোভ হয়, যাতে অন্তত সতের জন মারা যায়। এই সহিংসতার ঘটনাগুলো নিয়ে প্রায় একশোটির বেশি মামলা হয়েছে, যাতে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাসহ অনেক নেতা-কর্মীকে অভিযুক্ত করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা আমীর আহমেদ শফির মৃত্যুর পর গত বছর নভেম্বর মাসে হেফাজতে ইসলামের নতুন কমিটি গঠন করে তার আমীর হন জুনায়েদ বাবুনগরী। এই কমিটি গঠন নিয়ে তখন সংগঠনটির একটি অংশ ক্ষুব্ধ হয়েছিল এবং প্রয়াত আমীর আহমেদ শফির ছেলে ও তার অনুসারীরা কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। রবিবার রাতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরই সংগঠনটি একটি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে। +text: বিগ থ্রি - চার্চিল, রুজভেল্ট ও স্ট্যালিন নাৎসি জার্মানির অবস্থা সঙ্গিন। সোভিয়েত বাহিনী বার্লিনের কাছে, অন্যদিকে মিত্র বাহিনী জার্মানির পশ্চিম সীমান্ত অতিক্রম করেছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী অগ্রসরমান জাপানের দিকে। নিজেদের সেনাবাহিনী যখন জয়ের সুবাতাস পাচ্ছে তখন কথিত বিগ থ্রি মানে তিন পরাশক্তি- যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল এবং সোভিয়েত নেতা জোসেফ স্ট্যালিন - কৃষ্ণসাগরের তীরে সোভিয়েত রিসোর্ট -ইয়াল্টায় বৈঠকে বসতে সম্মত হন। ৭৫ বছর আগে রক্তক্ষয়ী সেই যুদ্ধের পর এ ধরণের কর্মকাণ্ড যাতে আর না হয় সেটিই তারা চেয়েছিলেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত রাশিয়া সহযোগিতা করতে চেয়েছে নিজেদের শর্তানুযায়ী। ইয়াল্টা চুক্তি সত্ত্বেও কয়েক মাসের মধ্যেই তৈরি হয়েছিলো স্নায়ু যুদ্ধের পটভূমি। যে যুদ্ধ পরবর্তী কয়েক দশক বিশ্বকে বিভক্ত করে রেখেছিলো। বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর অ্যান্ড্রু বেসভিক বিবিসিকে বলছেন, "ইয়াল্টা বৈঠকের উদ্দেশ্য যদি হয় যুদ্ধের পর শান্তি আনা, তাহলে বলতেই হয় সেটি ব্যর্থ হয়েছে"। কী হয়েছিলো ১৯৪৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ততদিনে নাৎসি জার্মানি যুদ্ধে প্রায় পরাজিত। দেশটি তখনো প্রতিরোধের চেষ্টা করে যাচ্ছিলো কিন্তু যুদ্ধের ফল নিয়ে তখন আর কারও কোনো সন্দেহ ছিলোনা। পূর্ব ইউরোপে জার্মান বাহিনীর অবস্থা করুণ। কিন্তু যখন সোভিয়েত বাহিনী জয়ের পথে ততদিনে ইস্টার্ন ফ্রন্টে জার্মান বাহিনীর তিন ভাগই নিহত বা আহত। ধারণা করা হয় প্রতি সাতজনের একজন সোভিয়েত নাগরিক যার মোট সংখ্যা প্রায় আড়াই কোটি - যাদের দুই তৃতীয়াংশই বেসামরিক তারা নিহত হয়েছিলো। দেশটির শহর ও ধনী এলাকাগুলোর মারাত্মক ক্ষতি হয়েছিলো। শিল্প, কৃষি, বাড়িঘর, রাস্তাঘাট এমনকি মানচিত্রেই আর দেখা যাচ্ছিলোনা। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: বার্লিন দেয়াল পতন যেভাবে বদলে দিয়েছিল পৃথিবী গ্যাস চেম্বারে কাজ করতে বাধ্য হওয়া ইহুদির জবানবন্দী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কীভাবে সেনা প্রশিক্ষণ বদলে দিয়েছে রুশদের অ্যাটম বোমার ফর্মুলা দেন যে আমেরিকান তিন বছরের যুদ্ধের পর সোভিয়েতের কাছে পরাজিত হয় জার্মানি নেতাদের লক্ষ্য কী ছিলো জোসেফ স্ট্যালিন তার দেশকে নিজের পায়ে দাড় করাতে চেয়েছিলেন। তিনি জার্মানিকে ভাগ করতে চেয়েছিলেন যাতে করে দেশটি আর কখনো হুমকি হতে না পারে। এবং একই সাথে তিনি ব্যাপক ক্ষতিপূরণ চেয়েছিলেন- নিজের দেশকে পুনর্গঠনের জন্য। তিনি জানতেন এসব পেতে হলে তাকে পশ্চিমা শক্তিগুলোর আস্থা অর্জন করতে হবে। উইনস্টন চার্চিল জানতেন যে স্ট্যালিন কী চান। তারা ১৯৪৪ সালের অক্টোবরেও মস্কোতে সাক্ষাত করেছিলেন। তিনি জানতেন লাখ লাখ সোভিয়েত সৈন্য যারা জার্মানিকে মধ্য ও পূর্ব ইউরোপ থেকে বের করে দিয়েছে এবং এখন সোভিয়েত তার সৈন্য সেসব জায়গায় রেখে দিতে চাইলে যুক্তরাজ্যের কিছু করার নেই। যুক্তরাজ্য যুদ্ধের সূচনা করেছিলো ১৯৩৯ সালের সেপ্টেম্বরে কারণ তার মিত্র পোল্যান্ড দখল করে নিয়েছিলো জার্মানি। তবে জয়ের জন্য যুক্তরাজ্যকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। চার্চিল আশা করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্র তাকে সমর্থন দিবে ও স্ট্যালিনের পাশে দাঁড়াবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের ছিলো নিজের কিছু অগ্রাধিকার। তিনি চেয়েছিলেন যুদ্ধ পরবর্তী বৈশ্বিক শান্���িরক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাতিসংঘে স্বাক্ষর করুক স্ট্যালিন। তিনি এও চেয়েছিলেন যে সোভিয়েতরা জাপানের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ ঘোষণা করুক। যদিও নাটকীয়ভাবে সবকিছুই জাপানের প্রতিকূলে যাচ্ছিলো, তারপরেও তাদের বাহিনী প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলো। যুক্তরাষ্ট্র তখন জাপানি দ্বীপে রক্তক্ষয়ী আগ্রাসন চালানোর কথাও ভেবেছিলো। ইয়াল্টা সামিট হয়েছিলো এখানে ইয়াল্টায় কী হয়েছিলো রুজভেল্ট ভূমধ্যসাগরীয় কোনো এলাকায় বসতে চেয়েছিলেন আর স্ট্যালিনের ছিলো বিমানভীতি। তিনিই ইয়াল্টা বৈঠকের প্রস্তাব দেন। কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছিলো ৪ঠা থেকে ১১ই ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের আবাসস্থল লিভাদিয়া প্রাসাদে যেটি রাশিয়ার শেষ জার নিকোলাস-২ এর গ্রীষ্মকালীন বাসভবন ছিলো। এর আগেও ১৯৪৩ সালে ইরানে সাক্ষাত হয়েছিলো তিন নেতার। চার্চিলের চেয়ে রুজভেল্ট বেশি বিশ্বাস করতেন স্ট্যালিনকে। চার্চিল স্ট্যালিনকে ক্রমবর্ধমান হুমকি হিসেবে বিবেচনা করতেন। এক সপ্তাহের আলোচনার পর বিগ থ্রি তাদের সিদ্ধান্ত জানালেন বিশ্বকে। নি:শর্ত আত্মসমর্পণের পর জার্মানি দু ভাগে ভাগ হবে। এ ঘোষণায় বলা হয়েছিল জার্মানি ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করবে এবং সেজন্য একটি কমিশন হবে মস্কোতে। এই নেতারা আরও একমত হলেন যে পোল্যান্ড সহ ইউরোপ জুড়ে মুক্ত এলাকাগেুলোতে গণতান্ত্রিক নির্বাচন হবে ও নতুন সরকার হবে। সোভিয়েতরা ওয়ারশ'তে যে প্রভিশনাল কমিউনিস্ট সরকার আছে সেটিও সম্প্রসারিত হবে। কিন্তু গণতন্ত্র বিষয়টার অর্থ স্ট্যালিনের কাছে ছিলো ভিন্ন। প্রকাশ্যে মুক্ত ইউরোপের জন্য অবাধ নির্বাচনে তিনি সম্মত হলেও তার বাহিনী ইতোমধ্যেই মধ্য ও পূর্ব ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা গুলো দখল করে নিয়েছিলো। আবার স্ট্যালিনের অনুরোধ নেতারা সম্মত হন যে পোল্যান্ডের সীমানা কিছু সরে আসবে সোভিয়েত ইউনিয়নকে ভূমি দিয়ে। আর এই বাল্টিক রাষ্ট্রটি সোভিয়েত ইউনিয়নে যোগ দিবে। ইতিহাসবিদ আন্নে অ্যাপলবম তার বইয়ে লিখেছেন যে নেতারা ইউরোপের ভাগ্য নির্ধারণ করেছেন মারাত্মক অদূরদর্শিতা নিয়ে। রুজভেল্ট বেশি আগ্রহী ছিলেন তার জাতিসংঘ পরিকল্পনা নিয়ে এবং তিনি সফল হয়েছেন, কারণ তিন দেশই একমত হয়েছিলো ২৫শে এপ্রিল ১৯৪৫ সালে সান ফ্রান্সিসকোতে প্রতি��িধি পাঠাতে। এর বাইরে স্ট্যালিন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে যুদ্ধ শেষ হওয়ার তিন মাস পর জাপানে আগ্রাসন চালাবেন তিনি। তবে চুক্তি সত্ত্বেও শীর্ষ বৈঠকের পর পূর্ব ইউরোপের পরিস্থিতি কেমন হবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন চার্চিল। তিনি তার বাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধ শেষ হবার আগে দূরপ্রাচ্যের দিকে দ্রুত সরে আসতে বললেন। ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত দু ভাগে বিভক্ত ছিলো বার্লিন পরে কী হলো কয়েক মাসের মধ্যে রাজনৈতিক অবস্থার নাটকীয় পরিবর্তন হলো। রুজভেল্ট মৃত্যুবরণ করেন এপ্রিলে ও ক্ষমতায় আসলেন হ্যারি ট্রুম্যান। মে মাসে জার্মানি নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করলো এবং ১৬ই জুলাই যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু বোমার সফল পরীক্ষা চালালো। পরীক্ষার পরদিনই প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যান উইনস্টন চার্চিল ও জোসেফ স্ট্যালিনের সাথে বার্লিনের বাইরে পোটসড্যাম সম্মেলনে যোগ দিলেন। ট্রুম্যান স্ট্যালিনকে তেমন একটা জানতেননা। চার্চিল ক্ষমতায় ছিলেন মে, ১৯৪০ পর্যন্ত। তার পরিবর্তে ১৯৪৫ এর নির্বাচনের পর আসলেন ক্লিমেন্ট অ্যাটলি। তখন সম্মেলনের মুডটাই ছিলো ভিন্ন। যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকরা ছিলেন আত্মবিশ্বাসী কারণ তারা পরমাণু বোমার অধিকারী। ট্রুম্যান স্ট্যালিনের বিষয়ে আরও সন্দিহান ছিলেন। তিনি ও তার উপদেষ্টারা বিশ্বাস করতেন যে সোভিয়েত ইয়াল্টা চুক্তির বিষয়ে অনড় থাকবে না। দু বছরের মধ্যে এলো ট্রুম্যান ডকট্রিন—অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়নের রাশ টেনের ধরার ঘোষণা দিলো—শুরু হলো স্নায়ু যুদ্ধ। পরে চার্চিল ও রুজভেল্ট দুজনের সমালোচনা হলো স্ট্যালিনকে বেশি সুযোগ দেয়ার জন্য। কিন্তু বাস্তবতা হলো তাদের তেমন কিছু করার ছিলো না, কারণ স্ট্যালিনের বাহিনী তখন পুরো মধ্য ও পূর্ব ইউরোপে। ইয়াল্টার পর চার্চিল সোভিয়েত স্বার্থে আঘাতের পরিকল্পনা করলেও ব্রিটিশ সমরবিদদের কাছে তা ছিলো অবাস্তব। প্রফেসর লেফলার বলেন, "ইয়াল্টায় শুধু সে সময়ের বাস্তবতাই প্রতিফলিত হয়েছিলো"। ১৯৪৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুরো বিশ্বের ভাগ্য নির্ধারণ করতে একটি রিসোর্ট বসেছিলেন তিন জন মানুষ। +text: সচিবালয়ে ভারতের হাই কমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাশের সাথে সাক্ষাৎ করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রাজধানী ঢাকায় মন্ত্রীর সচিবালয়ের কার্যালয়ে এই সৌজন্য সাক্ষাতটি অনুষ্ঠিত হয় বলে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা বা বাসস জানিয়েছে। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের ফেসবুক পাতায়ও এ সংক্রান্ত একটি ছোট সংবাদ প্রকাশ করে বলা হয় যে বৈঠকের সময় রীভা দাশ এবং ওবায়দুল কাদের দু'দেশের সহযোগিতা সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন। সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনারের এই বৈঠকটি এমন সময় অনুষ্ঠিত হলো যখন দু'দেশের গণমাধ্যমেই খবর প্রকাশিত হয়েছে যে প্রতিবেশী দেশ দুটোর সম্পর্কে এক ধরণের শীতলতা দেখা যাচ্ছে। ভারতের গণমাধ্যমে এমন প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হয়েছিল, যাতে বলা হয়েছে যে চার মাস ধরে বার বার চেষ্টা চালিয়েও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করতে পারেননি ভারতের এই রাষ্ট্রদূত। এসব খবরে এমন বলা হয় যে রীভা গাঙ্গুলী দাশ যেমন দীর্ঘ কয়েক মাস প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাননি, তেমনি কোভিড-১৯ মোকাবেলায় বাংলাদেশকে সহযোগিতার জন্য দিল্লিকে ধন্যবাদ জানিয়ে ঢাকা কোন নোট পর্যন্ত পাঠায়নি। এমন অভিযোগও গণমাধ্যমে তোলা হয় যে ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনর্নিবাচিত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন ভারতীয় প্রকল্পের কাজে ধীরগতি চলছে। আর দু'দেশের সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে এই আলোচনা শুরু হয় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করার পর থেকে। ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় এখন অধিকতর উষ্ণ, সৌহার্দ্যপূর্ণ এবং উন্নয়নমুখী। "ভারত বাংলাদেশের বন্ধুত্ব সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং '৭১ এর রক্তের রাখিবন্ধনে আবদ্ধ," মন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বাসস জানায়। মিস্টার কাদের বলেন, "দুই দেশের সম্পর্কের সেতুবন্ধ সময়ে পরিক্রমায় দিন-দিন নবতর মাত্রায় উন্নীত হচ্ছে।" প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ ও সুদৃঢ় হলে পারস্পরিক উন্নয়ন এবং অমীমাংসিত সমস্যা সমাধান সহজেই সম্ভব, এ কথা উল্লেখ করে তিনি জানান যে সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন ও গণপরিবহনের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভারতীয় ঋণ কর্মসুচির আওতায় বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়েও হাইকমিশনারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ এগিয়ে নিতে হাইকমিশনারের সহযোগিতার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের মন্ত্রী। সাক্ষাতের বিষয়টি উল্লেখ করে ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে যে পোস্ট দেয়া হয়েছে, তাতে দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে আলোচনার কথা জানানোর পাশাপাশি হাইকমিশনার মন্ত্রীকে ঈদ-উল-আযহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এমন তথ্য দেয়া হয়। সাক্ষাতের বিষয়টি নিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও পোস্ট দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এর আগে ২৭শে জুলাই অর্থাৎ গতকালই বাংলাদেশের কাছে ১০টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ বা রেল ইঞ্জিন হস্তান্তর করে ভারত। এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশের কাছে ১০টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ বা রেল ইঞ্জিন হস্তান্তর করে ভারত এ উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে ভারতের পক্ষে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর, রেল, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল, রেলপথ প্রতিমন্ত্রী সুরেশ আঙ্গাদি উপস্থিত ছিলেন। আর বাংলাদেশের অনুষ্ঠানে ছিলেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর 'পারস্পরিক বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে রচিত দুই দেশের কালোত্তীর্ণ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের গভীরতা'র কথা তুলে ধরেন। কোভিডের সময়ও দুই দেশের সহযোগিতার গতি হ্রাস না করায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। অন্যদিকে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন যে দুই দেশের সম্পর্ক খুবই দৃঢ় এবং পারস্পরিক মূল্যবোধ, নীতি ও প্রত্যয়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত। এই সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও উঁচুতে তোলা সম্ভব হবে বলে মনে করেন মিস্টার মোমেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার রীভা রীভা গাঙ্গুলী দাশ আজ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। +text: ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কলেজে ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে অধ্যাপনা করেছেন স্টিভেন হকিং ওয়েস্টমিনস্টার চার্চ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে দুনিয়াজুড়ে বিখ্যাত এই দুই বিজ্ঞানীর কাছেই সমাহিত করা হবে স্টিভেন হকিং এর দেহভস্ম। পদার্থ বিজ্ঞানী প্রফেসর হকিং কয়েক দশক ধরে মটর নিউরন সিন্ড্রোমে ভুগছি���েন। গত ১৪ই মার্চ তিনি ৭৬ বছর বয়সে মারা যান। বিজ্ঞানী হকিং-এর পরিবার থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ৩১শে মার্চ ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেট সেন্ট ম্যারি চার্চে তার শেষকৃত্যু অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে গনভিল ও কেইয়াস কলেজে স্টিভেন হকিং ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে অধ্যাপনা করতেন গ্রেট সেন্ট ম্যারি গির্জাটি তার খুব কাছেই। আরো পড়ুন: স্টিভেন হকিং: রসিক এবং খেয়ালী এক বিজ্ঞানী হকিং দেখিয়েছিলেন অচল শরীর কোন সমস্যা নয় স্টিভেন হকিং: ছবিতে বর্ণাঢ্য জীবন ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে সমাহিত হবে স্টিভেন হকিং এর দেহভস্ম ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে এ বছরের শেষের দিকে এক থ্যাঙ্কস গিভিং অনুষ্ঠানে চিরবিদায় জানানো হবে এই বিজ্ঞানীকে। শেষকৃত্যের কথা জানাতে গিয়ে কলেজের ওয়েবসাইটে প্রফেসর হকিং-এর সন্তান লুসি, রবার্ট ও টিম লিখেছেন, "আমাদের পিতা ক্যামব্রিজে ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাস ও কাজ করেছেন। তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয় ও এই শহরের অবিচ্ছেদ্য অংশ।" "একারণেই আমরা এই শহরে তার শেষকৃত্য আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই শহরকে তিনি খুব ভালোবাসতেন। এই শহরটিও তাকে খুব ভ।লোবাসতো। আমাদের পিতার জীবন ও কর্ম অনেকের কাছে অনেক কিছু। তাদের মধ্যে ধর্ম বিশ্বাসী যেমন আছেন তেমনি আছেন অবিশ্বাসীও। সেকারণে শেষকৃত্য অনুষ্ঠানটি হবে সনাতন ও ইনক্লুসিভ।" যেদিন স্টিভেন হকিং এর মৃত্যুর কথা ঘোষণা করা হয় সেদিন তার গনভিল ও কেইয়াস কলেজের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছিলো ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবের ডিন ড. জন হল বলেছেন, সতীর্থ বিজ্ঞানীদের পাশে স্টিভেন হকিংকে সমাহিত করা খুবই যুৎসই। তিনি জানান, স্যার আইজ্যাক নিউটনকে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে সমাহিত করা হয়েছিলো ১৭২৭ সালে। আর চার্লস ডারউইনকে করা হয় আইজ্যাক নিউটনের পাশে ১৮৮২ সালে। তিনি বলেন, "আমরা বিশ্বাস করি জীবন ও মহাবিশ্বের রহস্যময় অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে ধর্ম ও বিজ্ঞান বিষয়ে একসাথে কাজ করা গুরুত্বপূর্ণ।" আরো পড়ুন: সন্ত্রাস-বিরোধী নাগরিক হোন: ব্রিটিশ পুলিশ মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের পদত্যাগে সু চি'র কী লাভ? বিদেশীদের যৌন কাজের টার্গেট হচ্ছে রোহিঙ্গা মেয়েরা আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী স্টিভেন হকিং-কে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে আরেক বিখ্যাত বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনের পাশে স��াহিত করা হবে বলে জানা গেছে। তার কাছেই থাকবেন আরো একজন বিজ্ঞানী বিবর্তনবাদের জনক চার্লস ডারউইন। তাকে কবর দেওয়া হয়েছিলো ১৮৮২ সালে। +text: ক্যাসিনোর জুয়া খেলার স্লট মেশিন কারণ ১৯৭২ সালের সংবিধানে জুয়া বন্ধের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য রাষ্ট্রকে নির্দেশনা দেয়া আছে। যদিও পরবর্তীকালে এ বিষয়ে আর নতুন কোনো আইন হয়নি, তাই এখনো কার্যকর রয়ে গেছে দেড়শ বছরের বেশি পুরনো একটি আইন। এদিকে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বাংলাদেশে সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্স বা পারমিট নিয়ে মদ বিক্রি ও পানের সুযোগ আছে। বুধবার রাতে ঢাকায় র‍্যাবের সমন্বিত অভিযানে চারটি কথিত 'ক্যাসিনো' সিলগালা ও বহু মানুষকে আটকের পর জুয়াখেলা এবং ক্যাসিনো ইত্যাদি নিয়ে এখন বাংলাদেশে বিস্তর আলোচনা হচ্ছে। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর বরাতে জানা যাচ্ছে ঢাকায় অন্তত ষাটটি এমন ক্যাসিনোর অস্তিত্ব রয়েছে। পশ্চিমা উন্নত দেশগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশের আশপাশের দেশ সিঙ্গাপুর, ম্যাকাও, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া এমনকি নেপালেও জুয়া খেলার জায়গা হিসেবে ক্যাসিনোর জনপ্রিয়তা আছে। কিন্তু বিভিন্ন ক্লাবে বা আড্ডায় গোপনে জুয়াখেলার অনেক আসর বসার কথা নানা সময়ে শোনা গেলেও একেবারে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও উপকরণসজ্জিত এই ক্যাসিনোগুলোর অস্তিত্ব থাকবার খবর বাংলাদেশের মানুষের কাছে একেবারেই নতুন। অথচ মদ বিক্রি বা পানের মতো ক্যাসিনোর অনুমোদন বা লাইসেন্স দেয়ার কোনো ব্যবস্থা বা সুযোগই বাংলাদেশের কোন আইনে নেই।, বলছেন আইনজীবী জোতির্ময় বড়ুয়া। জুয়ার বিষয়ে যে আইনটি কার্যকর আছে সেটি হলো 'প্রকাশ্য জুয়া আইন ১৮৬৭', সেখানে অবশ্য ক্যাসিনো বিষয়ে কিছু বলা নেই। তবে ওই আইনে - 'কেউ তার ঘর, তাঁবু, কক্ষ, প্রাঙ্গণ বা প্রাচীরবেষ্টিত স্থানের মালিক বা রক্ষণাবেক্ষণকারী বা ব্যবহারকারী হিসাবে যেকোনো ব্যক্তি জ্ঞাতসারে বা স্বেচ্ছায় অন্য লোককে, উক্ত স্থানকে সাধারণ জুয়ার স্থান হিসাবে ব্যবহৃত করিতে দিলে অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ডের বিধান' রাখা হয়েছে। এমনকি 'তাস, পাশা, কাউন্টার অর্থ বা অন্য যেকোনো সরঞ্জামসহ যেকোনো ব্যক্তিকে ক্রীড়ারত বা উপস্থিত দেখিতে পাওয়া গেলেও' শাস্তি দেয়ার সুযোগ আছে এই আইনে। মি. বড়ুয়া বলছেন ঢাকায় বছরের পর বছর ধরে প্রকাশ্যে দিবালোকে সবার নাকের ডগাতেই এসব চলেছে, কিন্তু অন্য অনেক ব���ষয়ের মতো এখানেও আইনের প্রয়োগ ছিলোনা। তিনি বলেন, "কিছু মানুষকে অভিযানে আটক করা হয়েছে ঘটনাস্থল থেকে। কিন্তু জুয়া খেলার মেশিনগুলো কারা আমদানির অনুমতি দিয়েছে? কোন আইনে দিয়েছে? রাজস্ব বোর্ড, কাস্টমস কোন আইনে এগুলো আনার অনুমতি বা ছাড়পত্র দিয়েছে? কিভাবে পরিবহন হলো? কারা সহযোগিতা করেছে আর কারা কোন আইনে লাভবান হয়েছে-এগুলোও খুঁজে বের করা উচিত"। প্রসঙ্গত, চারটি ক্যাসিনোতে অভিযান চালিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের একটি দল। এসময় পাঁচজন ম্যাজিস্ট্রেট ক্যাসিনোগুলো সিলগালা করার পাশাপাশি সেখান থেকে ১৮২ জনকে আটক করে। তাদের প্রত্যেককে ছয় মাস থেকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে র‍্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত। বৃহস্পতিবার আটকদের আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে। এছাড়া জব্দ করা হয় প্রায় ৪০ লাখ নগদ টাকা, জাল টাকা, জুয়া খেলার সরঞ্জাম, ইয়াবাসহ দেশি-বিদেশি মদ। এই ক্যাসিনোগুলো হল- ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাব, মতিঝিলের ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, গুলিস্তানের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র এবং বনানীর গোল্ডেন ঢাকা বাংলাদেশ। আরো খবর: সৌদিতে আঘাত হেনেছিলো ১৮ ড্রোন আর ৭ ক্ষেপণাস্ত্র মাটির নিচে যুক্তরাষ্ট্রের জরুরি তেলের ভান্ডার ডিম কি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো? বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ প্রায়শই দাবি করে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর তখনকার সরকার দেশে মদ-জুয়া নিষিদ্ধ করেছিলো। +text: ডোমিনিক রয় তার আইনজীবীদের আবেদনের পর একটি ফেডারেল কোর্ট মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। কিন্তু ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে রাজ্য সরকার। এরপর সুপ্রিম কোর্ট সেই আবেদনটি খারিজ করে দেয়ার পর, বৃহস্পতিবার নির্ধারিত সময়েই প্রাণঘাতী ইনজেকশন দিয়ে তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়। আদালতের কাছে মি. রয়ের আবেদন ছিল যে, তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকরের সময় যেন খৃষ্টান যাজক উপস্থিত না থেকে একজন ইমাম উপস্থিত থাকেন, যাতে তিনি নিজের ধর্মের একজন ইমামের কাছ থেকে ধর্মীয় নির্দেশনা এবং স্বস্তি অনুভব করতে পারেন। এই আবেদনের পর ফেডারেল আদালত সাময়িকভাবে ওই দণ্ডাদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করেন। তবে ওই আদেশের বিরুদ্ধে দ্রুত আপিল করে রাজ্য কর্তৃপক্ষ। সুপ্রিম কোর্ট ডোমিনিক রয়ের আবেদনটি ���ারিজ করে দেয়। আরো পড়ুন: মৃত্যুদণ্ড: বিশ্বের কতগুলো দেশে এখনো চালু আছে ১২ বছরে ৩০০ মৃত্যুদণ্ডের সাক্ষী যে নারী অ্যালাব্যামা রাজ্যের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর কক্ষ এর আগে প্রাণঘাতী ইনজেকশনের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর স্থগিত করে তিন বিচারকের প্যানেল বলেছিলেন, ''রাজ্যের বিরুদ্ধে মি. রয়ের শক্তিশালী দাবি রয়েছে।'' ''এখানে সাংবিধানিক সমস্যাটি হলো যে, কোন খৃষ্টান বন্দীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময় রাজ্যটি সেখানে নিয়মিতভাবে খৃষ্টান যাজককে উপস্থিত থাকার অনুমতি দেয়।।" "কিন্তু একজন মুসলিম এবং অন্য ধর্মের বন্দিদের ক্ষেত্রে একই সুবিধা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।'' বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: খালেদা জিয়া: রাজনৈতিক যত সফলতা এবং ভুল যেভাবে শুরু হয়েছিল বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের পথচলা ইয়াসির আলীর মারকুটে ব্যাটিংয়ের পেছনে তামিম? তেলাপোকার নামে সাবেক প্রেমিক বা প্রেমিকার নামকরণ অ্যালাব্যামা সংশোধনাগার বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, খৃষ্টান যাজক ক্রিস সামারস ১৯৯৭ সাল থেকে প্রত্যেক খৃষ্টান বন্দির মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকরের সময় উপস্থিত থাকেন। পাশাপাশি তার ইমাম ইউসুফ মাইসোনেট ২০১৫ সাল থেকে ওই কারাগারের বন্দিদের ধর্মীয় সেবা দিয়ে আসছেন। ওই ইমামকেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর কক্ষে থাকতে দেয়ার আবেদন করেছিলেন রয়। তবে সেখানে থাকতে না পারলেও ইমাম প্রত্যক্ষদর্শীদের কক্ষে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। ১৯৯৫ সালে অ্যালাব্যামা রাজ্যে ১৫ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণ এবং হত্যার অভিযোগে ডোমিনিক রয়কে ১৯৯৯ সালে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। ইমামকে ছাড়াই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলো যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালাবামা অঙ্গরাজ্যের মুসলিম বন্দী ডোমিনিক রয়ের। +text: নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে ঢাকাস্থ কানাডিয়ান হাই কমিশনের উদ্যোগে এ বৈঠকটি সকাল সাড়ে আটটা থেকে এগারোটা পর্যন্ত গুলশানের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিতি একজন বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের নির্বাচনে পরিবেশ এবং নির্বাচন সংক্রান্ত নানা বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের মতামত জানতে চেয়েছেন কূটনীতিকরা। এ বৈঠকে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস-এর রাষ্ট্রদূত এবং ঢাকাস্থ জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে এ বৈঠকে বিএনপি'র দিক থেক�� যোগ দিয়েছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান। আওয়ামী লীগের তরফ থেকে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিপু মনি এবং সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য মেহজাবিন খালেদ। এছাড়া বিকল্প ধারা বাংলাদেশে সদ্য যোগদানকারী শমসের মবিন চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি অভিযোগ করছে, নির্বাচনে তাদের জন্য খুবই প্রতিকুল অবস্থা তৈরি করে রাখা হয়েছে অন্যদিকে নাগরিক সমাজের তরফ থেকে এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমীন মুর্শেদ। বদিউল আলম মজুমদার বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, তিনি নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে কথা বলেছেন। নির্বাচন কমিশন যাতে নিরপেক্ষতার সাথে রেফারির ভূমিকা পালন করে সেটি তুলে ধরেছেন তিনি। নাগরিক সমাজের একজন প্রতিনিধি বৈঠকে বলেন, বাংলাদেশ একটি নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে কিনা সেটি ভেবে দেখতে হবে। বিগত কয়েকটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রসঙ্গ টেনে বলা হয়, নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের কয়েকটি ধাপ রয়েছে। প্রথমত, নির্বাচনের আগে বিরোধী নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার এবং নানা ধরণের মামলার মাধ্যমে ঘরছাড়া করা। দ্বিতীয় ধাপে রয়েছে, ভোটের দিন বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর এজেন্ট বের করে দেয়া এবং সর্বশেষ ধাপ হচ্ছে, ভোট কেন্দ্র আংশিক কিংবা পুরোপুরি দখল করা। আরও পড়ুন: বিএনপির তৃণমূল নেতা কর্মীরা ভোটের মাঠে নিরুদ্যম কেন ঐক্যফ্রন্ট জিতলে প্রধানমন্ত্রী হবেন কে? নির্বাচনী প্রচারণা নাকি ক্রিকেট - মাশরাফি কী বললেন আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের সময় এ ধরণের পরিস্থিতি ঘটতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেন নাগরিক সমাজের একজন প্রতিনিধি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানিয়েছেন, তাদের দল কতটা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে এ নির্বাচনে প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা করতে যাচ্ছে সে বিষয়টি তারা তুলে ধরেছেন। মি: চৌধুরী বলেন, "এখন তো সরকার আর নির্বাচন কমিশন একাকার হয়ে গেছে। সরকার নির্বাচন কমিশনকে প্রোটেকশন করতেই ���্যস্ত। এখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তো দূরের কথা, আমরা প্র্যাকটিকালি নিচের দিকে যাচ্ছি।" এ বৈঠকে বিএনপির দিকে থেকে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে সেগুলোর বিষয়ে পাল্টা জবাব দিয়েছে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দল। ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে নির্বাচন কমিশন অতীতে নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এখন মোটামুটি একটি শক্তিশালী অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। দলনিরপেক্ষ সরকারের দাবি থেকে সরে এসে শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচনে যাচ্ছে বিএনপি আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দলের অন্যতম এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য মেহজাবিন খালেদ বলেন, বিএনপি নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেছে। "তারা (বিএনপি) কমপ্লেইন দিয়েছে যে আমাদের ক্যান্ডিডেটকে বাতিল করা হয়েছে। আমাদের কথা হলো এটা তো আমাদের দায়িত্ব না। এটা তো ইলেকশন কমিশনের দায়িত্ব। এখানে তো আমাদের কিছু করার নেই," বলেন মেহজাবিন খালেদ। মেহজাবিন খালেদ এ আয়োজনকে বৈঠক বলতে রাজী নন। তিনি বলছেন, এটি ছিল কানাডিয়ান হাই কমিশনের উদ্যোগে আয়োজিত 'পলিসি ব্রেকফাস্ট'। তারা বিভিন্ন সময় এ ধরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যেখানে নানা বিষয়ের উপর আলোচনা হয়। এ অনুষ্ঠানে কূটনীতিকদের দিক থেকে তেমন কোন মন্তব্য করা হয়নি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা যেসব কথা বলেছেন সেগুলো তারা শুধু শুনেছেন কূটনীতিকরা। তবে মার্কিন সংস্থা ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইন্সটিটিউট-এর (এনডিআই) একজন প্রতিনিধি বলেছেন, নির্বাচনের সময় নারীরা যাতে নিরাপদে ভোট দিতে পারে সেদিকে সবার নজর দেয়া উচিত। বাংলাদেশে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতার সাথে তাদের ভূমিকা পালন করতে পারছে কি না সেটি নিয়ে দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা পশ্চিমা কূটনীতিকদের কাছে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। +text: আতশবাজির ঝলকে রঙ্গিন ঢাকার আকাশ। ছবিটি মিরপুর এলাকা থেকে রাত ১২টার পরে তোলা। রাত ঠিক বারটায় আতশবাজির ঝলকে রঙ্গিন হয়ে উঠেছিল ঢাকার আকাশ, পাশাপাশি পটকার শব্দে প্রকম্পিত হয়েছে বিভিন্ন এলাকা। এবার নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছিল মানুষের বাসা-বাড়ির ছাদকেও। কিন্তু অনেকেই ছাদে বারবিকিউ পার্টিসহ পারিবারিক নানা আয়োজন করেছেন নতুন বছরের প্রথম মূহুর্তটি স্মরণীয় করে রাখবার জন্য। আব��র সাধারণ মানুষের আয়োজন নিষিদ্ধ থাকলেও তারকা হোটেলগুলোতে পার্টি, ডিসকোসহ নানা আয়োজনে অংশ নিয়েছে উচ্চবিত্তের অসংখ্য মানুষ। ঢাকার বিমানবন্দরের কাছে একটি তারকা হোটেলের ডিসকোতে গিয়েছিলেন এমন একজন জানিয়েছেন যে রাত আড়াইটা পযর্ন্ত পার্টি হয়েছে যেখানে নাচ-গানে উদযাপন করেছেন বহু নারী-পুরুষ। ঢাকার খিলগাঁওয়ের অধিবাসী বিপ্লব চন্দ্র পাল বিবিসি বাংলাকে বলছেন, তারা যে ভবনে বাস করেন সেখানকার বিভিন্ন ফ্লাটের অধিবাসীরা মিলে নানা আয়োজন করেছেন তাদের ভবনের ছাদে। "সবাই মিলে উৎসব করেছি। খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন ছিল। মহিলাদের জন্য বালিশ খেলা ছিল। নতুন বছরের শুরুতে আতশবাজি ছুড়েছি। সব মিলিয়ে দারুণ মজা করেছি আমরা," বলছিলেন তিনি। তিনি জানান, তাদের ভবনটি লাইটিং করা ছাড়াও ছবি তোলার জন্য ফটো সেশন কর্নার করেছিলেন তারা। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: উড়ানো হচ্ছে ফানুস "শুধু আমরাই নয় এলাকার বহু বাড়ির ছাদেই ছিলো এমন আয়োজন। আসলে পুরো একটা বছর এতো খারাপ গেছে যে উৎসবের মাধ্যমে নতুন বছর স্বাগত জানানোর পাশাপাশি সবাই একটু স্বস্তি পেতে চাইছিলাম," বলছিলেন বিপ্লব চন্দ্র পাল। আবার মিরপুরের নাসিরুল হক রিমু বলছেন নতুন বছর স্বাগত জানানোকে উপলক্ষ করে নিজেদের বাসার ছাদে পারিবারিক প্রোগ্রাম করেছেন তারা। "পরিবারের সবাই মিলে এ আয়োজনে অংশ নিয়েছি যাতে ছিলো নানা গেমস, খাওয়া-দাওয়া, পটকা ফুটানো, ফানুস উড়ানো এবং কেক কাটা"। অন্যদিকে ধানমন্ডি থেকে আহমেদ মম বলছেন, আতশবাজি আর ধুম -ধাড়াক্কা শব্দে তাদের এলাকা ছিলো প্রকম্পিত। গ্রীনরোডের ফেরদৌসি রেজা চৌধুরী বলছেন, প্রায় একই অবস্থা ছিল তাদের গ্রীনরোডের বাসার এলাকায়, এমনকি অনেক বাড়ি থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ভেসে এসেছে মিউজিকের শব্দ। মোহাম্মদপুরের তৌহিদুর রহমান রাসেল বলছেন, "রাত বারটার ঢাকার আকাশে ছিলো ফানুস আর ফানুস আর পটকার ছড়াছড়ি... ঢাকা যেন অন্য কোন নগরী"। আকাশজুড়ে ফানুস আবার গুলশানের অধিবাসী কামরুন নাহার দীপা বলছেন, "মধ্যরাতে ঢাকার আকাশ ছিলো আলোয় পরিপূর্ণ"। বাংলাদেশে বিশেষ করে ঢাকায় গত কয়েক বছর ধরে প্রকাশ্যে বা উন্মুক্ত স্থানে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন ঠেকাতে উদ্যোগ নেয় পুলিশ। ফলে উচ্চবিত্তরা তারকা হোটেলগুলোকে নিয়ে নানা আয়োজনে অংশ নিতে পারলেও মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারগ��লোর জন্য ঘরের বাইরে যাওয়ার সুযোগ থাকে না বলে অনেকে বলছেন। এ কারণে গত কয়েক বছর ধরেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছিল ছাদ কেন্দ্রিক আয়োজন গুলো। এবার তাতেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল। ঢাকার বিমানবন্দরের কাছে একটি তারকা হোটেলে থার্টি ফার্স্ট নাইটের আয়োজনে অংশ নেয়া একজন জানিয়েছেন সেখানে গভীর রাত পর্যন্ত পার্টি করেছেন তারা। নেচে গেয়ে সবাই নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছে, বলছিলেন তিনি। তারকা হোটেলগুলোর অনেকগুলোতেই ডিজে পার্টি বা ডিসকোর আয়োজনে অংশ নিতে পাঁচ হাজার থেকে ২০/২৫ হাজার টাকা শুধু এন্ট্রি ফি দিতে হয়েছে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় থার্টি ফার্স্ট নাইটে ঘরের বাইরে উন্মুক্ত স্থানে কোন আয়োজনে কারো অংশ নেয়ার সুযোগ ছিলো না কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণেই, কিন্তু তাতে থামিয়ে রাখা যায়নি মানুষের উদযাপনকে। +text: মৃতদেহ থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর কোন আশঙ্কা নেই বলছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ফলে মৃতদেহ থেকে এই ভাইরাস ছড়ানোর কোন আশঙ্কা নেই বলে জানাচ্ছেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ডা. নাসিমা সুলতানা। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিষয়ক তথ্য নিয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, "মৃতদেহ দাফন বা সৎকার করতে তিন চার ঘণ্টা সময় লেগেই যায়। তিন ঘণ্টা পরে আর মৃতদেহে এই ভাইরাসের কার্যকারিতা থাকে না।" আর এ কারণেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কেউ মারা গেলে তাকে স্বাস্থ্য নির্দেশনা মেনে নিজ ধর্ম মেনে সৎকার কিংবা পারিবারিক কবরস্থানেই তাকে দাফন করা যাবে বলে জানানো হয়। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে তার দাফন ও সৎকার নিয়ে নানা ধরণের স্টিগমা এবং ভয় প্রচলিত আছে। আর এ কারণে, মারা যাওয়ার দীর্ঘ সময় পরও মৃতদেহ সরানো বা দাফন না হওয়ার নানা ঘটনাও সামনে আসে। এর আগে নারায়ণগঞ্জে এক ব্যবসায়ীর মৃতদেহ নিজের বাড়ির সিঁড়িতে পরে থাকলেও তা সরাতে পরিবারের কেউ এগিয়ে আসেনি। ওই এলাকার একজন জনপ্রতিনিধি বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, নিজে মুসলিম হলেও স্বজনেরা এগিয়ে না আসায় করোনাভাইরাসে মৃত একাধিক হিন্দু মরদেহের মুখাগ্নি করতে হয়েছে তাকে। এমন অবস্থার প্রেক্ষিতেই আজ এ মৃতদেহের দাফন ও সৎকার নিয়ে এ তথ্য এলো। ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, নিজ নিজ ধর্মীয় বিধি মেনেই মৃতদেহ দাফন এবং সৎকার করা যায়। তিনি বলেন, নিয়ম ��নুযায়ী মৃতদেহের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে বডি ব্যাগ বা সেটা না পাওয়া গেলে পলিথিনে মুড়ে স্থানান্তর করা যায়। মৃতদেহ দাফন বা শেষকৃত্যের জন্য নির্ধারিত কবরস্থান বা পারিবারিকভাবে নির্ধারিত স্থানে দাফন ও শেষকৃত্য করা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, সংস্থাটি বলেছে যে, এখনো পর্যন্ত এটা প্রমাণিত হয়নি যে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তির দেহ থেকে সুস্থ কোন ব্যক্তির মধ্যে করোনাভাইরাস ছড়ায়। বাড়িতে বসে কোভিড-১৯ চিকিৎসা: যে ছয়টি বিষয় মনে রাখবেন করোনাভাইরাস: সুস্থ হয়ে উঠতে কতদিন লাগে? করোনাভাইরাস: স্বাদ-গন্ধ কমলেই রেড অ্যালার্ট করোনাভাইরাস চিকিৎসায় কীভাবে কাজ করবে প্লাজমা থেরাপি? এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে মৃতদেহ দাফন ও সৎকারের যে নির্দেশিকা দেয়া হয়েছে সেখানে বলা হয়েছে যে, মৃতদেহ দাফন বা সৎকার পরিবার ও জনসাধারণের জন্য খুবই সংবেদনশীল। এ কাজে যাতে কোন অব্যবস্থাপনা, মতপার্থক্য বা জটিলতার সৃষ্টি না হয় তার জন্যই এই নির্দেশিকা দেয়া হয়েছে। সেই সাথে সংক্রমণও যাতে ছড়িয়ে না পরে তা রোধ করাটাও এই নির্দেশিকা দেয়ার একটি উদ্দেশ্য। এ বিষয়ে ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শে এবং অনুমোদনের ভিত্তিতেই দাফন ও সৎকারের এই নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, যদিও মৃতদেহ থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি নেই তারপরও যেহেতু ভাইরাসটি নতুন, এর বিষয়ে খুব বেশি তথ্য জানা যাচ্ছে না এবং প্রতিনিয়তই ভাইরাসটি তার জিনগত বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করে চলেছে, তাই সাবধানতার অংশ হিসেবে দাফন ও সৎকারের সময় এই নির্দেশিকা মেনে চলতে বলা হচ্ছে। "এই ভাইরাস নিয়ে যা গবেষণা হয়েছে তা মাত্র ৫-৬ মাসের বিষয়। আর তাই সাবধানতার জন্য এগুলো বলা হচ্ছে।" এই নির্দেশনায় মৃতদেহের ধর্মীয় আচার অনুসরণ ও পরিবারের সম্মতি নেয়ার বিষয়টির উপরও জোর দেয়া হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্য বিষয়ক উল্লেখযোগ্য যেসব নির্দেশনা রয়েছে সেগুলো হচ্ছে- •শুধু কোভিড-১৯ রোগী ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তি সুরক্ষা পোশাক পরে মৃতদেহ স্পর্শ বা দাফন ও সৎকার করতে হবে। •মৃতদেহ স্পর্শ নূন্যতম রাখতে হবে। •কোভিড-১৯ রোগীর মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করা যাবে না। •মৃতদেহ দাফনের আগে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তি সুরক্ষা পোশাক পরে এবং জীবা���ুমুক্ত করার প্রক্রিয়া মেনে মুখের লালার নমুনা সংগ্রহ করতে হবে। •চার সদস্যের একটি দল যথার্থ সুরক্ষা পোশাক পরে মৃতদেহ প্রস্তুত ও বহন করবে। •অনিয়ন্ত্রিতভাবে মৃতদেহ পরিষ্কার বা ধোয়া যাবে না। •মৃতদেহ প্লাস্টিকের কভার দিয়ে এমনভাবে মুড়িয়ে রাখতে হবে যেন তা কভারের বাইরের সংস্পর্শে না আসে। •দাফনের প্রক্রিয়া যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করতে হবে। •মৃতদেহ বহনকারী ব্যাগটি কখনো খোলা যাবে না। •মৃতদেহ অপসারণের পর রোগীর ঘরটি পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করতে হবে। •এছাড়া মৃতদেহ পরিবহন, পরিবহনে ব্যবহৃত যানবাহন জীবাণুমুক্ত করতে হবে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে যে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার তিন ঘণ্টা পর ওই মৃতদেহে আর ভাইরাসটির কোন কার্যকারিতা থাকে না। +text: ভারত ও চীনের মধ্যে কয়েক দশক ধরে সীমান্ত নিয়ে বিরোধ চলছে ভারতের অভিযোগ যে চীন একতরফাভাবে স্থিতাবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে চেয়েছিল, অন্যদিকে চীন ভারতীয় বাহিনীর দিকে আঙ্গুল তুলে বলেছে তারাই চীনা বাহিনীর সদস্যদের আক্রমণ করেছিল। সোমবারের ওই সংঘর্ষে দুই পক্ষেই হতাহত হয়েছে বলে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানালেও চীন এখনও তাদের দিকে কোনও হতাহতের সংখ্যা জানায়নি। চীন কী বলছে? চীনের এক সামরিক মুখপাত্র এই প্রথম মুখ খুলেছেন বিষয়টি নিয়ে। চীনের সরকারি পত্রিকা পিপলস্ ডেইলি সেই বিবৃতি ছেপেছে। পিপলস লিবারেশন আর্মির পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলের মুখপাত্র ঝ্যাং শুইলি কে উদ্ধৃত করে পিপলস ডেইলি লিখেছে, "ভারতীয় সৈন্যরা তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে আবারও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পার করে বেআইনি কাজ চালাচ্ছিল এবং ইচ্ছে করে প্ররোচনা দেয় আর চীনা বাহিনীকে আক্রমণ করে।" "তারই ফলশ্রুতিতে দুই পক্ষের মধ্যে 'ভয়ঙ্কর' শারীরিক সংঘাত হয় এবং হতাহত হয়।" মি. ঝ্যাং আরও বলেছেন, "ভারতের উচিত তাদের বাহিনীকে কঠোরভাবে সংযত করা। নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন ও প্ররোচনা দেওয়া বন্ধ করে তাদের উচিত চীনের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার নিষ্পত্তি করা।" আরো পড়তে পারেন: ভারত কেন '৬২-র যুদ্ধে চীনের কাছে হেরে গিয়েছিল? সীমান্তে ভারত-চীন গোলাগুলি না হবার রহস্য লাদাখে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে সামরিক বৈঠকে যা ঘটল চীন-ভারত সংঘাত: কার শক্তি কতটা, কোন্‌ দেশ কার পক্ষ নেবে চীনের সাথে সংঘর্ষে ভারতের ২০ জন সৈ���্য নিহত সম্প্রতি লাদাখ সীমান্তে সংঘাতের পর চীন ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে পিপলস্ ডেইলির মালিকানাধীন ট্যাবলয়েড পত্রিকা 'গ্লোবাল টাইমস' বুধবার একটি সম্পাদকীয় লিখেছে, যেখানে ভারতের কড়া সমালোচনা করা হয়েছে। "চীন-ভারত সীমান্তে সবসময়েই উত্তেজনা বিরাজ করার পিছনে ভারতের দম্ভ আর অদূরদর্শী মনোভাবই দায়ী। সম্প্রতি নতুন দিল্লি সীমান্ত ইস্যু নিয়ে একটা কঠোর মনোভাব নিয়েছে, যা দুটি ভুল মূল্যায়নের ওপরে দাঁড়িয়ে আছে" "তারা মনে করে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমাগত চাপের ফলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক তিক্ত করতে চাইবে না চীন। তাই ভারতের তরফে প্ররোচনা দেওয়া হলেও হয়তো চীন প্রত্যাঘাত করবে না। এছাড়াও ভারতের কিছু মানুষের মনে ভুল ধারণা আছে যে তাদের নিজেদের বাহিনী চীনের বাহিনীর থেকে বেশি শক্তিশালী। এই দুটি ভুল ধারণাই ভারতের মতামতের যৌক্তিকতাকে প্রভাবিত করে চীন সংক্রান্ত নীতিনির্ধারণের সময়ে," লিখেছে গ্লোবাল টাইমস। ওই সম্পাদকীয়তে আরও লেখা হয়েছে, "ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াতে চায় না চীন। তারা আশা করে দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত সমস্যাগুলি শান্তিপূর্ণভাবেই মেটানো যাবে। এটা চীনের বদান্যতা, দুর্বলতা নয়।" এর আগে মঙ্গলবারই ভারতের সেনাবাহিনী দুটি বিবৃতি দেয়। প্রথমে মৃতের সংখ্যা তিন বলা হলেও রাতে একটি বিবৃতিতে জানানো হয় গুরুতর আহত হয়েছিলেন, এমন ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার ফলে লাদাখের ওই সংঘর্ষে মোট ২০ জন নিহত হয়েছেন। চীন ও ভারতের সেনাদের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাত ঘটেছে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ৪৫ বছরের মধ্যে এই প্রথম লাদাখের নিয়ন্ত্রণ রেখায় সংঘর্ষে এতজন সৈন্য মারা গেলেন। দুই সেনাবাহিনী অবশ্য মঙ্গলবারই উত্তেজনা প্রশমনের জন্য বৈঠক করেছে। আর এটাও দুই পক্ষই বলেছে যে আগের চার দশকের মতো এই সংঘর্ষেও কোনও গুলি চলে নি। ভারত আর চীনের মধ্যে যে সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়েছে লাদাখে, তা নিয়ে দুই দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ এনেছে। +text: পুলিশ বলছে আজ সকালে শহরেই গুলিতে ৬ জন নিহত হন শহরের স্বনির্ভর বাজার এলাকায় সকাল পৌনে ৮টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বিবিসি বাংলাকে জানান, পাহাড়ি সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ��রন্টের (ইউপিডিএফ) প্রসীত গ্রুপের লোকজন সকালে একটি সমাবেশ ও মিছিল উপলক্ষে জড়ো হচ্ছিলেন। এ সময় অস্ত্রধারীরা পাশের একটি পুলিশ বক্স, সিএনজি স্ট্যান্ড এবং ইউপিডিএফের কার্যালয়ের সামনে জটলা লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে। যা চলে প্রায় আধাঘণ্টা ধরে। এতে ইউপিডিএফের সদস্যসহ সাধারণ পথচারী হতাহত হন। বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারেন: আজিজ খান যেভাবে বাংলাদেশের ডলার বিলিওনিয়ার যেসব ছবির মাধ্যমে আলোড়ন তোলেন শহিদুল আলম পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে সাত জনতে উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠায়। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছয় জনকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে আরও কয়েকজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য কুজেন্দ্রলাল ত্রিপুরা, জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার আলী আহমদ খান হাসপাতালে হতাহতদের খোঁজখবর নেয়ার পাশাপাশি গুরুতর আহতদের দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। পাবর্ত্য চট্টগ্রাম, সবসময় স্পর্শকাতর এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইউপিডিএফের প্রতিপক্ষ জন সংহতি সমিতি জেএসএস এর সংস্কারপন্থী অংশ (এম এন লারমা গ্রুপ) - ও ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক অংশ-বর্মা গ্রুপ হামলায় জড়িত থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। তবে এ বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে বলে জানান তারা। নিহতদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলেন- তপন চাকমা, এল্টন চাকমা ও জিতায়ন চাকমা। এর মধ্যে তপন চাকমা ইউপিডিএফ সহযোগী সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং এল্টন চাকমা একই সংগঠনের সহ সম্পাদক বলে জানা গেছে। আর জিতায়ন চাকমা উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কাজ করছিলেন বলে জানায় পুলিশ। এছাড়া গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে সোহেল চাকমা, সমর বিকাশ চাকমা ও সখিডন চাকমাকে। তবে তাদের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আধিপত্য বিস্তারের নাকি অন্য কোন কারণে এই হামলা হয়েছে সেটা তদন্তের নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি সদর থানার পুলিশ সুপার আলী আহমদ। আরও পড়তে পারেন: পাহাড়িদের দলগুলো বিভক্ত হয়ে পড়ছে কেন পার্বত্য চট্টগ্রাম: আঞ্চলিক রাজনীতির জটিল সমীকরণ একে পূর্ব পরিকল্পিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের মুখপাত্র মাইকেল চাকমা । বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, "হামলাটি হয়েছে বিজিবি সেক্টর গেটের কাছাকাছি যেখানে সবসময় ছয় সাতজন অস্ত্রধারী জোয়ান থাকেন। এছাড়া ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনা সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। এমন সুরক্ষিত একটি স্থানে এতোজন অস্ত্রধারী গুলি চালিয়ে চলে গেল, আর তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হল না। এছাড়া ঘটনাস্থলে পুলিশ বক্সে হামলার যে দাবি পুলিশ করেছে তাহলে তারা পাল্টা কোন ব্যবস্থা কেন নেয়নি?" তবে ইউপিডিএফ এই হামলার পেছনে জেএসএস-এমএন লারমা গ্রুপের সম্পৃক্ততার যে অভিযোগ করেছে সে বিষয়ে জেএসএসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা এ বিষয়ে কোন প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজী হননি। বর্তমানে হামলা স্থলে বিজিবি সদস্যের পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি পুরোপুরি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকলে পুরো শহরেই পরিস্থিতি থমথমে হয়ে আছে বলে জানা গেছে। ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের সদস্যরা পাহাড়ে গুম, অপহরণ, চাঁদাবাজীর বিরুদ্ধে সমাবেশ ও মিছিলের প্রস্তুতি নেয়ার সময় এই হামলার ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশের খাগড়াছড়িতে পাহাড়ীদের সংগঠন ইউপিডিএফ সদস্যদের লক্ষ্য করে বন্দুকধারীদের হামলায় ছয় জন নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন অন্তত তিন জন। +text: নবজাতকের অবস্থাকে স্থিতিশীল বলে বর্ণনা করছেন ডাক্তাররা। ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের কাটনী জেলায় ঘটেছে এই ঘটনা। সেখানকার একটি হাসপাতালে রাখা হয়েছে নবজাতককে। ডাক্তাররা শিশুটির অবস্থাকে স্থিতিশীল বলে বর্ণনা করছেন। যা ঘটেছিল: কাটনী শহরের বাসিন্দা লক্ষ্মী সিং নামের ওই নারী বৃহস্পতিবার আত্মহত্যা করেন গলায় ফাঁস লাগিয়ে। আত্মীয়স্বজনরা তাঁকে উদ্ধার করতে গিয়ে দেখেন সেই অবস্থাতেই পেট থেকে বেরিয়ে এসে ঝুলছে নবজাতকটি। মায়ের শরীরের সঙ্গে প্লাসেন্টা বা নাড়ী দিয়ে নবজাতকের শরীর তখনও জুড়ে ছিল। পুলিশ আর হাসপাতালে খবর দেওয়া হয়, তারপরে মৃত নারীকে হাসপাতালে নিয়ে এসে বাচ্চাটিকে মায়ের শরীর থেকে আলাদা করা হয়। ইমারজেন্সি এম্বুলেন্স সার্ভিসের দায়িত্বে থাকা ডাক্তার মাখনলাল সেন বলছেন, "আমাদের কাছে মেসেজ আসে যে এক নার�� গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে রয়েছেন আর তার শরীর থেকে একটি বাচ্চা বেরিয়ে এসেছে। ওখানে গিয়ে দেখি মায়ের শরীরের সঙ্গে নাড়ী দিয়ে জুড়ে থাকা অবস্থায় ঝুলছে শিশুটি। ওই অবস্থাতেই তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি আমরা।" ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল সার্ভিসকে খবর দেয়া হয়েছিল শিশুটির জীবন রক্ষার জন্য। কাটনী সিভিল হাসপাতালের সার্জেন, ডাক্তার যশবন্ত ভার্মার কথায়, "ওই নারী নয় মাসের গর্ভবতী ছিলেন। তিনি যখন ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়েছেন, তখন মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণেই প্রায় দু কেজি ওজনের বাচ্চাটি মায়ের পেট থেকে বেরিয়ে এসেছে। জীবিত অবস্থায় মানুষ অনেক কিছুর ওপরেই নিজের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে, কিন্তু মারা যাওয়ার পরে তো সেই নিয়ন্ত্রণটা থাকে না। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।" শিশুটির অবস্থা হাসপাতালে মৃত মায়ের শরীর থেকে বেরিয়ে আসা বাচ্চাটির শারীরিক অবস্থা গোড়ায় বেশ বিপজ্জনক ছিল। কিন্তু হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করার পরে আপাতত তার অবস্থা স্থিতিশীল। মৃত নারী লক্ষ্মী সিংয়ের স্বামী সন্তোষ সিং বলছেন, পরিবারে সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। তবুও যে কেন স্ত্রী আত্মহত্যা করল, সেটাই কেউ বুঝে উঠতে পারছে না। আরও পড়ুন: আত্মহননকারী নারীদের ১০ জনের চারজনই ভারতের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা প্রবণতা দূর করবেন কিভাবে? আত্মহত্যার ভিডিও সরাসরি সম্প্রচার ভারতীয় ছাত্রের সন্তোষ এবং লক্ষ্মীর আগেই চারটি সন্তান রয়েছে - দুটি কন্যা এবং দুই পুত্র। তিনি জানান,"রোজকার মতো পুরো পরিবারের সকলে খাওয়া দাওয়া করে রাতে শুয়ে পড়েছিলাম। সকালে ছটার দিকে আমার ঘুম ভাঙ্গে, তখনই স্ত্রীকে দেখতে পাই নি। অন্য বাচ্চাগুলো বিছানাতেই ছিল। স্ত্রীকে খুঁজতে গরুর গোয়ালে গিয়ে দেখি সেখানেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে আর বাচ্চাটা পেট থেকে বেরিয়ে এসেছে।" পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ এবং মৃত নারীর পরিবার - কেউই এখনও বুঝে উঠতে পারে নি যে লক্ষ্মী সিং কেন আত্মহত্যা করলেন। গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন গর্ভবতী এক নারী। গোয়াল ঘরে ঝুলছিল তাঁর লাশ। উদ্ধার করতে আসা আত্মীয় স্বজন দেখলেন, সেই অবস্থাতেই সন্তান জন্ম দিয়েছেন তিনি। মায়ের পেট থেকে বেরিয়ে এসে ঝুলছিল নবজাতক শিশুটি। +text: বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকায় প্রয়াত নায়ক সালমান শাহকে স্মরণ ১৯৯৬ সালের ৬ই সেপ্���েম্বর চিত্রনায়ক সালমান শাহকে ঢাকায় তাঁর বাসভবনে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তবে তার পরিবার এবং ভক্তদের অনেকেই দাবি করছিলেন যে তাকে হত্যা করা হয়েছে। সালমান শাহের মৃত্যুর ঘটনায় সর্বশেষ তদন্তটি করার দায়িত্ব পায় পিবিআই। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলন করে তারা জানায় যে একাধিক সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে তারা নতুন তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। পুলিশ বলছে, তদন্ত করার ক্ষেত্রে সালমান শাহের দেহরক্ষী, মালী, প্রতিবেশী, বাড়ির কাজের সহকারীসহ অনেক ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। পিবিআই'র ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, "এই সাক্ষীদের প্রত্যেকেই সেই সময় সালমান শাহের একজন সহশিল্পীর সাথে তার মেলামেশা করাকে পারিবারিক কলহের একটি কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন"। তবে সালমান শাহের মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল যে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর মা নীলা চৌধুরীর অভিযোগ ছিল পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা করতে গেলে পুলিশ সেটিকে অপমৃত্যুর মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে। পুলিশ বলেছিল, অপমৃত্যুর মামলা তদন্তের সময় যদি বেরিয়ে আসে যে এটি হত্যাকাণ্ড, তাহলে সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে হত্যা মামলায় রূপ নেবে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে অন্যতম জনপ্রিয় নায়কের আকস্মিক মৃত্যুতে তখন স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল পুরো দেশ। সালমান শাহের মৃত্যুকে ঘিরে যখন একের পর এক প্রশ্ন উঠতে থাকে, তখন পরিবারের দাবির মুখে দ্বিতীয়বারের মতো ময়না তদন্ত করা হয়। মৃত্যুর আটদিন পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে তিন সদস্য বিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। দ্বিতীয় ময়নাতদন্তে আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করা হলে মামলার কাজ সেখানেই থেমে যায়। পরে পরিবারের দাবির প্রেক্ষিতে পিবিআই এই মামলা আবার তদন্তের কাজ শুরু করে। ১৯৯২ সালে 'কেয়ামত থেকে কেয়ামত' সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আসেন সালমান শাহ। জনপ্রিয় একটি হিন্দি সিনেমার অফিসিয়াল রিমেক ছিল 'কেয়ামত থেকে কেয়ামত'। এ সিনেমাটি মুক্তির পর থেকেই চলচ্চিত্রে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেন সালমান। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তিটি কে? হ্যারি এবং মেগানের জন্য ওয়ালিস সিম্পসনের কঠিন শিক্ষা ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস, ইটালির কয়েকটি শহর অবরুদ্ধ সালমান শাহের মৃত্যুর তেইশ বছরেরও বেশী সময় পরে বাংলাদেশের তদন্ত সংস্থা পুলিশ ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো বা পিবিআই নিশ্চিত করেছে যে ওই সময়ের জনপ্রিয় এই চিত্রনায়ক পারিবারিক কলহের জের ধরে আত্মহত্যা করেছিলেন। +text: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল এর এক সপ্তাহ আগে অর্থাৎ ১৭ই মে থেকে আবাসিক হলগুলো খুলে দেয়া হবে। এই মধ্যবর্তী সময়ে অনলাইনে ক্লাস চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি। আবাসিক হল খোলার আগেই ১২০টি হলের এক লাখ ৩০ হাজার আবাসিক শিক্ষার্থী সেইসঙ্গে শিক্ষক কর্মচারীদের টিকা দেয়া ব্যবস্থা করতে হবে। সব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে হল খোলার প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। যারা বিসিএস পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক, পরীক্ষার আবেদন ও পরীক্ষার তারিখ- বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সাপেক্ষে পিছিয়ে দেয়া হবে। এছাড়া বয়সের কারণে কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন, তাদের ব্যাপারে সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি জানান। হলে কোন শিক্ষার্থী অবস্থান নিলেও তাদের হলত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দীপু মনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে যদি কেউ শৃঙ্খলাবিরোধী কাজে সম্পৃক্ত হন, তাহলে তাদের দায়িত্ব প্রতিষ্ঠান নেবে না। সেক্ষেত্রে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভ্যন্তরীণ বিষয় সামাল দেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে শনি এবং রোববার জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তালা ভেঙ্গে হলে ঢুকে পড়ে। জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে হল খুলে দেয়ার দাবীতে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর ১৭ মার্চ থেকে অন্য সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। যা আজ পর্যন্ত চালু হয়নি। এতে শিক্ষার্থীরা সেশনজটে পড়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। রোববার রাতে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকশ শিক্ষার্থী তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করে এবং সেখানে অবস্থান নিয়ে বাকি সব হল খুলে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকে। ওই রাতেই রাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেন�� নির্দেশ না মানলে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারও দেয়া হয়। যদিও প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে সোমবার বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের গেট খুলে এবং ভেতরের তালা ভেঙে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীরা। নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা এভাবে হলে প্রবেশ করার কথা জানান। আরও পড়তে পারেন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বিরোধিতা করেছিলেন যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশে অবনতি কেন ক্লাসে ফিরতে চান ঢাবি শিক্ষক রুশাদ ফরিদী প্রসঙ্গত, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ক্রিকেট টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয় এলাকাবাসীর সংঘর্ষ বাঁধে। এতে প্রায় ত্রিশ শিক্ষার্থী আহত হন, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা তাদের নিরাপদ অবস্থানের জন্য হলগুলো খুলে দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। এদিকে, আবাসিক হলগুলো খুলে দেয়ার দাবিতে কয়েক দফা আন্দোলনে নেমেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সবশেষ সোমবার দুপুরে শহিদুল্লাহ হলে ভেতরে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীরা হল খোলার দাবিতে আন্দোলন করছে বলে জানা গেছে। "হল খোলার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ ঢাবি" শিরোনামে একটি ফেসবুক পেইজ খুলে দাবি জানিয়ে আসছিল শিক্ষার্থীরা। ওই গ্রুপের সদস্য সংখ্যা এক রাতের মধ্যে ৫ হাজার ছাড়িয়ে যায়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস জুড়ে মিছিল করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। হল খুলে দেয়ার দাবিতে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েরে শিক্ষার্থীরা শনিবার সন্ধ্যা থেকে হল খুলে দেয়ার দাবিতে উপাচার্যের ভবনের সামনে অবস্থান নেন। হল খোলার বিষয়ে প্রশাসনের সিদ্ধান্ত জানতে একটি স্মারকলিপি দেয়া হয়। পরে রাতে তারা উপাচার্যের ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ঈদ-উল-ফিতরের ছুটির পর ২৪শে মে থেকে শ্রেণীকক্ষে পাঠদান শুরু হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। +text: ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল গবেষক ও সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ স্বীকৃতি এসেছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এফএও'র মত সংস্থার গবেষণার মাধ্যমে। ২০০৭ সালে এফএও বিশ্বের ১০০টি জাতের ছা���লের ওপরে গবেষণা চালিয়ে 'ব্ল্যাক বেঙ্গল'কে বিশ্বের অন্যতম সেরা জাত হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট দেখতে কেমন, বৈশিষ্ট্য কী? পৃথিবীতে প্রায় ৩০০ রকমের ছাগলের জাত আছে, কিন্তু আকার, আয়তন এবং বৈশিষ্ট্য ভেদে এরা একে অপরের থেকে আলাদা হয়। ২০১৮ সালে ব্ল্যাক বেঙ্গল গোটের জেনোম সিকোয়েন্সিং বা পূর্ণাঙ্গ জীবন রহস্য উন্মোচন করেছে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের একটি দল। সেই দলের সদস্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানিম্যাল ব্রিডিং অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক এমএএম ইয়াহিয়া খন্দকার বিবিসিকে বলেছেন, এই ছাগলের গায়ের রং মূলত কুচকুচে কালো। এটি আকারে বেঁটে, কিন্তু শরীরের কাঠামো শক্তপোক্ত ও পেশীবহুল। এর গায়ের লোম খাটো এবং শিং ছোট হয়। একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ছাগল বা পাঠার ওজন হয় ২২ থেকে ৩০ কেজি, ছাগীর ওজন ২০ থেকে ২৫ কেজি হয়। ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল ১৪ মাসে দুইবার বাচ্চা দেয়, প্রতি বারে অন্তত দুইটি, সর্বোচ্চ ৫টি পর্যন্ত বাচ্চা দিতে পারে একবারে। এই ছাগল দুধ কম দেয়। বাংলাদেশ ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, আসাম, এবং উত্তর উড়িষ্যায় পাওয়া যায়। এছাড়া মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকাতেও পাওয়া যায় এই জাতের ছাগল। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পরিষ্কার, শুষ্ক এবং উঁচু জায়গায় থাকতে পছন্দ করে। অধ্যাপক এমএএম ইয়াহিয়া বলেছেন, "বহু বছর ধরে এ অঞ্চলে আবাস হবার কারণে ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগলের জিনগত বৈশিষ্ট্য বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে মিশে গেছে, যে কারণে মূলত বাংলাদেশেই তাদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।" বাংলাদেশের কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা এবং ঝিনাইদহ জেলায় ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগলের উৎপাদন সবচেয়ে বেশি হয়। ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট নামটি এলো কোথা থেকে ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট জাতের এই ছাগলটি বাংলাদেশের একেবারে নিজস্ব প্রজাতি। কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে অনেকে ছাগল পালন করে। গবেষক ও সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ অঞ্চলে পশুপালনের একেবারে শুরুর সময় থেকে এ জাতের ছাগল এখানে ছিল। তবে স্থানীয়ভাবে এগুলো দেশী কালো ছাগল বলে পরিচিত ছিল। কিন্তু যখন থেকে পশুপালন গবেষকেরা এই প্রাণী নিয়ে গবেষণা শুরু করেন তখন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে 'ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট' এই নামটি আসে। পরবর্তীতে যখন আন্তর্জাতিক গবেষণার বিষয় হয়ে ওঠে বাংলাদেশের এই নিজস্ব প্র���াতি, তখন থেকে একে এই নামেই ডাকা শুরু হয়। কেন ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট অনন্য? বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নূরে হাছনি দিশা বলেছেন, মূলত মাংস ও চামড়ার জন্য ব্ল্যাক বেঙ্গল বিখ্যাত। "মাংস এবং চামড়ার গুনগত মানের জন্য এ জাতের ছাগলকে উৎকৃষ্ট মানের বলা হয়। এছাড়া এটি পালন সহজ এবং পালন করার জন্য বড় কোন জায়গার দরকার হয় না।" সংখ্যার দিক থেকে ছাগল উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ এবং ছাগলের মাংস উৎপাদনে পঞ্চম। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এমএএম ইয়াহিয়া বলেছেন, "ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। আরো পড়তে পারেন: বাংলাদেশের যে এলাকায় ছাগল পালন নিষিদ্ধ ছাগলের খবর শেয়ার করে ৫৭ ধারায় সাংবাদিক গ্রেপ্তার জাহাজে ২৬টি ভেড়া আর ১০টি ছাগল থাকলে ক্যাপ্টেনের বয়স কতো? 'আমার দেয়া ছাগল মারা যায় নি. মানহানিও হয়নি' এছাড়া এ জাতের ছাগলের মধ্যে মৃত্যুহার অনেক কম, এবং ছাগলের বাচ্চার মৃত্যু হারও কম, যেটি এই জাতের ছাগলের সংখ্যা বৃদ্ধি ও জনপ্রিয়তার আরেকটি বড় কারণ।" বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, দেশে প্রতি বছর গড়ে ২ কোটি ২০ লাখ ছাগল উৎপাদন হয়, যার ৯৫ শতাংশই ব্ল্যাক বেঙ্গল। এর মধ্যে বড় অংশটি বাংলাদেশের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব কোরবানির সময় জবাই করা হয়। কোরবানির সময় দেশে যত গরু জবাই হয়, তার দেড়গুন ছাগল জবাই হয়। গত পাঁচ বছরে দেশে ছাগল আমদানি করতে হয়নি। ব্ল্যাক বেঙ্গলের চামড়াও বিশ্বে প্রসিদ্ধ। আন্তর্জাতিক বাজারে ছাগলের চামড়াকে গোটস্কিন ও কিডস্কিন উভয় নামে ডাকা হয়। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের চামড়া 'কুষ্টিয়া গ্রেড' নামে পরিচিত বিশ্ব বাজারে এবং এর কদর আছে। খামারীদের কাছে চাহিদা বাড়ছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা যাচ্ছে গবাদি পশুপালনের উৎসাহী হচ্ছেন দেশের অনেক উদ্যোক্তা। তাদের মধ্যে ব্ল্যাক বেঙ্গল গোটের চাহিদা অনেক। সারা বছর বাংলাদেশে ছাগলের মাংসের প্রচুর চাহিদা থাকে। প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নূরে হাছনি দিশা বলছিলেন, "এর একটি বড় কারণ হচ্ছে, এই জাতের ছাগল পালন করা সহজ, এবং এর মৃত্যু হার কম।" বাণিজ্যিক উৎপাদনের কারণে দেশে ব্ল্যাক বেঙ্গলসহ প্রায় সব জাতের ছাগলেরই উৎপাদন বেড়েছে। এক দশক আগেও দেশে দেড় কোটির ��ত ছাগল উৎপাদন হত। এই মূহুর্তে দেশে প্রায় ৫০ হাজারের মত ছাগলের খামার রয়েছে। ব্ল্যাক বেঙ্গল গোটের বৃদ্ধিতে বাধা পৃথিবীর অন্যতম সেরা জাতের ছাগল হবার পেরও অনেক সময় খামারিয়া এ ছাগল উৎপাদন করতে চান না। এর একটি কারণ হচ্ছে যেসব এলাকায় এই জাতের ছাগল বেশি হয়, সেখানে মরুকরণের পেছনে এই ছাগলকে অনেকে দায়ী করেন। এছাড়া ছাগল ফসলের ক্ষেত নষ্ট করে এবং তা থেকে উদ্ভূত আঞ্চলিক মারামারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঝিনাইদহ জেলার অন্তত ৩৫টি গ্রামে বেশ কয়েক বছর ছাগল পালন বন্ধ ছিল। তবে এর বাইরেও সমস্যা আছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগলের জিনের গুনাগুণ, বিশেষ করে প্রজনন ক্ষমতার গুনগত মান হ্রাস পেয়েছে বলে বলছিলেন অধ্যাপক এমএএম ইয়াহিয়া। তিনি বলেছেন, এর বড় কারণটি হচ্ছে দেশে এই জাতের পাঠার সংখ্যা অনেক কমে গেছে। গায়ে দুর্গন্ধ হয় হয় বলে লোকে পাঠা পালন করতে চায় না। "এর ফলে পাঠা হিসেবে ছাগলে জন্ম হলেও সেগুলোকে খাসি করে দেয়া হয়। তাছাড়া বাংলাদেশে পাঠার মাংসের চাহিদাও নেই, যে কারণে পাঠার সংখ্যা কম।" "বৈজ্ঞানিক গবেষণায় আমরা দেখেছি, একই পাঠা যদি একই পরিবারের কয়েক প্রজন্মের ছাগীর প্রজননের একমাত্র উৎস হয়, অর্থাৎ আন্তঃপ্রজনন হতে থাকে, তাহলে তার জিনের বৈশিষ্ট্যের মান আগের মত থাকবে না।" এই মূহুর্তে দেশে গড়ে ১৬২টি ছাগীর প্রজনন হয় একটি পাঠা দিয়ে। তিনি কৃত্রিম প্রজননকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়াকে এর সামধান মনে করেন। বাংলাদেশে প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট ২০০০ সালের দিকে কৃত্রিম প্রজননের ওপর গবেষণা শুরু করে। এখান থেকে গবেষণাগারে উৎপাদিত উন্নত জাতের পাঠা খামারীদের মধ্যে দেয়া হয়, তবে সে সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। পৃথিবীতে এই মূহুর্তে প্রাকৃতিক এবং কৃত্রিম উপায়ে মডিফায়েড মিলে প্রায় ৩০০'র মত জাতের ছাগল আছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের স্থানীয় জাতের কালো ছাগল বা ব্ল্যাক বেঙ্গল গোটকে অন্যতম সেরা জাতের ছাগল বলা হয়। +text: এই দুটি ধানের জীবনকাল হবে বপন করা থেকে ধান কাটা পর্যন্ত ১৪৩ দিন। ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের গবেষক ড.মো আলমগীর হোসেন বলেন, বোরো মৌসুমের জন্য উচ্চ-ফলনশীল ধান এটি। এই দুটি ধানের জীবনকাল হবে বপন করা থেকে ধান কাটা পর্যন্ত ১৪৩ দিন। এর ফলন প্রতি হেক্টরে সাত টন হবে। ধানটি প্রথমে গবেষণ���গারে পরীক্ষা করা হয়েছে। এরপর বাংলাদেশ এগ্রিকালচার রিসোর্স কাউন্সিলের টেকনিক্যাল কমিটিতে এই ধানের সফলতার বিষয়টি অনুমোদন হয়েছে। দুটি ধানের জাত উদ্ভাবন করতে ১৮ বছর সময় লেগেছে এখন এটা ন্যাশনাল সীড বোর্ডে চূড়ান্ত পর্যায়ে অনুমোদন হবে। মি. হোসেন বলছিলেন, সাধারণত বাংলাদেশ এগ্রিকালচার রিসার্স কাউন্সিলের টেকনিক্যাল কমিটিতে অনুমোদন হলে সেটা পরবর্তীতে চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে অসুবিধা হয় না। এই দুটি ধানের জাত উদ্ভাবন করতে ১৮ বছর সময় লেগেছে বলে তিনি জানিয়েছে। বর্তমানে দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় উচ্চ-ফলনশীল ধান ব্রি ধান ২৮। ব্রিধান ২৮ এবং ২৯ থেকে কৃষক ব্যাপক লাভবান হয়েছেন এখন দুটি জাত ব্রিধান ২৮ এবং ২৯ এর সাথে নতুন জাত বিআর ৮৮ এবং বিআর ৮৯ এর মূল পার্থক্য কী হবে? মি. হোসেন বলছিলেন "২৮ এর মত গ্রোথ হবে কিন্তু ফলন বেশি হবে। জাতীয়ভাবে ১০টা স্থানে তারা পরীক্ষামূলক ফলন করেছেন। সেখানে প্রতি হেক্টরে ৬০০ কেজি ধানের ফলন বেশি হয়েছে"। তবে তারা আশা করছেন কৃষকরা চাষ করা শুরু করলে পরবর্তীতে এই ফলন আরো বাড়বে। এর আরো বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ধানটা হবে চিকন, সুস্বাদু, ২৮শের মত জীবনকাল কিন্তু ফলন বেশি। আগামী দুই এক বছরের মধ্যেই কিছু কিছু কৃষকের কাছে ধানটা পৌছানো সম্ভব হবে বলে তিনি জানিয়েছিলেন। এর আগে ১৯৯৪ সালে ব্রি ধান ২৮ এবং ২৯ উদ্ভাবন করে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। দীর্ঘদিন ধরে এই দুইটি জাতের ফসল উৎপাদন করে কৃষক ব্যাপক লাভবান হয়েছেন বলে গবেষকরা বলছেন। আরো পড়ুন: পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হতে আরও চার বছর বিলম্ব? বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে 'সাইবার যুদ্ধের' সম্ভাবনা ডিবি পরিচয়ে তুলে নেয়া ওরা ১১ জন কোথায়? বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের একদল বিজ্ঞানী দীর্ঘসময় গবেষণা করে ধানের দুটি নতুন জাত বিআর ৮৮ এবং বিআর ৮৯ জাত উদ্ভাবন করেছেন। +text: চীনের উহান শহর থেকে করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি বলে সন্দেহ করা হয়। আকাশ থেকে তোলা এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ কীভাবে ঐ শহরে ১০ দিনের মধ্যে একটি হাসপাতাল তৈরি করছে। বেইজিং-এর তিয়ানানমেন গেট-এর বাইরে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছেন মা ও ছেলে। দু'জনেই মুখোশ পরা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে চীনে এবার চান্দ্র নববর্ষের কিছু অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন গিয়েছিলেন ব্রিটেন-আফ্র���কা বিনিয়োগ সম্মেলনে। সেখানে এক স্টলে এমন একটি যন্ত্র ছিল যার ওপর হেঁটে গেলে তা থেকে বিদ্যুৎ তৈরি হয়। তবে প্রধানমন্ত্রী হাঁটা-চলার চেয়েও বেশি কিছু করেছিলেন। থাইল্যান্ডের সুফন বুরি প্রদেশের একটি আখের ক্ষেতে আগুন জ্বলছে। পরিবেশ রক্ষার লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ কৃষিক্ষেত্রে অগ্নিসংযোগ নিষিদ্ধ করেছে। তাই কৃষকরা রাতের বেলা কাজটি করে থাকেন। সুইডিশ পরিবশেবাদী আন্দোলনকারী গ্রেটা টুনবার্গ টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে গিয়ে ভাষণ দেয়ার সময় পরিবেশ রক্ষায় ব্যর্থতার জন্য বিশ্ব নেতাদের তিরষ্কার করেছেন। বুরকিনা ফাসোর একটি শরণার্থী শিবিরে নারী ও শিশুরা। সোমবার সেখানকার আলামোতে হামলার পর শত শত পরিবার ঘর ছেড়ে পাালিয়ে যায় এবং এই অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নেয়। যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের রাজধানী রিচমন্ড। নতুন অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের বিরুদ্ধে জড়ো হয়েছিলেন হাজার হাজার প্রতিবাদকারী। যুক্তরাষ্ট্রের কোন কোন রাজ্যে ব্যক্তিগত অস্ত্র রাখা তাদের নাগরিক অধিকারের অংশ। দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত অ্যাডেলেইড হিলের পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছেন সাইকেল রেসের একদল প্রতিযোগী। গত ডিসেম্বরে দাবানলে এই এলাকাটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ইংল্যান্ডে সেভার্ন নদীর ওপর প্রিন্স অফ ওয়েলস ব্রিজ। নদী থেকে তৈরি কুয়াশার এই ছবিটি তুলেছে ন্যাশনাল পুলিশ এয়ার সার্ভিস। ব্রিটেনের খ্যাতনামা বাফটা পুরষ্কারের ট্রফি তৈরি করছেন রে টেরি। চুল্লিতে গলিত ধাতু থেকে এই ট্রফিটি তৈরি হয়। আগামী ২রা ফেব্রুয়ারী বাফটা অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে। কপিরাইট স্বত্ত্ব ছবির মধ্যে স্বীকার করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে নানা ঘটনার মাঝে চোখে পড়ার মতো কিছু ছবি। +text: শেখ হাসিনা: 'অভিযানে গডফাদারদেরও রেহাই নেই' এই অভিযান শুরুর পর এই প্রথম এ নিয়ে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে তাঁর সরকারের অবস্থান বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে তাকে বেশ কিছু প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। শেখ হাসিনা বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানটি হঠাৎ করে শুরু হয়নি। অনেক দিন ধরে প্রস্তুতি চালিয়ে তার পরই সরকারের বিভিন্ন বাহিনী এর বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে। দীর্ঘদিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ নি���়ে কাজ করেছে। "আমরা কিন্তু অপারেশনে খুব হঠাৎ করে যাইনি। হয়তো আপনাদের মনে হতে পারে যে হঠাৎ করে শুরু করেছে। ঘটনা কিন্তু তা নয়। দীর্ঘদিন থেকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে, দেখা হয়েছে। কারা আনে। কোন কোন স্পট থেকে ঢুকছে। কোথা থেকে তৈরি হচ্ছে। কী হচ্ছে।" তিনি আরও বলেন, "যেই গডফাদার থাকুক, সে যে বাহিনীতেই থাকুক, কাউকে কিন্তু ছাড়া হচ্ছে না, ছাড়া হবে না। আমি যখন ধরি, ভালো করেই ধরি। এটা তো ভালো করেই জানেন। কে কি, কার ভাই, কার চাচা সেটা কিন্তু দেখি না।" উল্লেখ্য, বাংলাদেশে গত প্রায় এক মাস ধরে মাদক বিরোধী কঠোর অভিযান শুরু হওয়ার পর এই প্রথম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। এই অভিযানে এরই মধ্যে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী অনেক প্রস্তুতি নিয়ে এই অভিযানে নামে। সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন, মাদক বিরোধী অভিযানে সরকারি বাহিনী যেভাবে অস্ত্র ব্যবহার করছে তাতে অনেকেই মনে করছেন যে সেখানে এর অপপ্রয়োগ হতে পারে। নিরীহ লোকও ভিক্টিম হতে পারে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য কী? জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত যত ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে একটা ঘটনাতেও যদি কেউ দেখাতে পারেন যে কোন নিরীহ ব্যক্তি এর শিকার হয়েছেন, সরকার নিশ্চয়ই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। মাদক বিরোধী অভিযানে প্রায় দশ হাজার লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং অনেককে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এসব বিষয় উল্লেখ না করে অন্য বিষয়গুলোকে সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে। "আপনারা জানেন যে মাদক একটা ব্যাধির মতো। আপনারাই পত্রিকায় লিখেছেন এই মাদকের বিরুদ্ধে। আজকে যখন অভিযান চলছে, তখন আপনারা কোনটা কিভাবে হচ্ছে না হচ্ছে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার শুরু করেছেন। কোনটা চান? অভিযান চলুক? নাকি বন্ধ হয়ে যাক?" "একটা অভিযান চালাতে গেলে যদি কোন ঘটনা ঘটে, যদি সেটাই বড় করে দেখান, তাহলে বলেন এটা বন্ধ করে দেই।"। শেখ হাসিনা বলেন, মাদক বিরোধী অভিযান যেটা চলছে, তাতে সারা দেশের মানুষ কিন্তু স্বস্তি পাচ্ছে। এটা কিন্তু মানুষের দাবি। কাজেই এটা চলবে। বাংলাদেশে যে মাদক বিরোধী অভিযান চলছে তাতে কাউকেই রেহাই দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। +text: রিচার্ড পিয়েরসন (বামে) এবং অ্যান্ডি পাডিকোম্বে ২০১২ সালে ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করেন তার বয়স যখন ২২, লন্ডনের একটি পানশালার বাইরে বন্ধুদের নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকাকালীন এক মদ্যপ গাড়িচালক তার বন্ধুদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দিলে দু'জন মারা যায়। ঘটনার কয়েকমাস পরেই তার সৎবোন মারা যায় সাইকেল দুর্ঘটনায়, আর তার কিছুদিন পর অপারেশনের সময় মারা যায় তার সাবেক বান্ধবী। ঐ সময় অ্যান্ডি স্পোর্টস সাইন্সের ওপর পড়াশোনা করছিলেন। টানা কয়েকটি ঘটনার শোক সইতে না পেরে পড়াশোনা ছেড়ে দেন। জীবন পুরোপুরি পরিবর্তন করার জন্য তিনি হিমালয়ে গিয়ে বৌদ্ধ ভিক্ষু হওয়ার দীক্ষা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন। পরের ১০ বছর ভিক্ষু হিসেবে জীবনযাপন করেন অ্যান্ডি। ভ্রমণ করেন এশিয়ার বিভিন্ন স্থানে, কখনো কখনো দিনে ১৬ ঘন্টা পর্যন্তও ধ্যান করতেন। তিনি বলেন, সবকিছু আবার সহজভাবে মেনে নেয়ার ক্ষেত্রে ধ্যান তাকে সাহায্য করেছে। ১০ বছর ভিক্ষু হিসেবে জীবনযাপন করেন অ্যান্ডি "ধ্যান আমার দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন এনেছে - নিজের বিষয়ে কম চিন্তা করে অন্যান্যদের সুখের জন্য চিন্তা করতে শিখিয়েছে এটি", বলছিলেন ৪৬ বছর বয়সী অ্যান্ডি তবে তার বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যরা শুরুর দিকে তাকে নিয়ে কিছূটা চিন্তিত ও ভীত ছিলেন। অ্যান্ডি বলেন, "তাদের একজনও জানতো না যে কীভাবে এ বিষয়টি সামাল দেবে। কিন্তু তা স্বত্ত্বেও প্রত্যেকে সমর্থন ও সাহস দিয়ে গেছেন।" ২০০৫ সালে যুক্তরাজ্যে ফিরে এসে ধ্যান বা মেডিটেশনে সহায়তা করার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেন, কিন্তু যুক্তরাজ্যে সে সময় মেডিটেশনের তেমন একটা চল ছিল না। "ধ্যানের সময় যেন ভঙ্গিতে কথা বলা হয়, তা নিয়ে আপত্তি ছিল অনেকের। কেউ আবার এটিকে কিছুটা হিপি বিষয় বলে মনে করতো।" "মানুষের ধ্যান করার সময়ও ছিল না, আর তারা জানতোও না যে এটা কীভাবে করা যায়।" লন্ডনে ব্যক্তিগত উদ্যোগে মেডিটেশনের প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করেন অ্যান্ডি, যেখানে অতিরিক্ত কাজের চাপে থাকা পেশাজীবীদের দৈনন্দিন জীবনযাপনের ক্ষেত্রে সাহায্য করার চেষ্টা করতেন তিনি। বর্তমানে তিনি এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা রিচার্ড পিয়েরসন জনপ্রিয় চিকিৎসা বিষয়ক অ্যাপ হেডস্পেস পরিচালনা করেন, যেটি বিশ্বজুড়ে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি বার ডাউনলোড করা হয়েছে এবং যাদের বার্ষিক আয় ১০ কোটি ডলারেরও বেশি বলে ধারণা করা হয়। ৩৮ বছর বয়সী রিচার্ড ২০০৫ সালে ছিলেন একজন পেশাজীবী, যিনি জীবন ও কাজের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য সহায়তা নিতে অ্যান্ডির কাছে গিয়েছিলেন। "অ্যান্ডির সাথে যখন আমার পরিচয় হয় তখন আমি বেশ মরিয়া ছিলাম। আমি সামাজিকভাবে টানা দুশ্চিন্তায় ভুগতাম যেটি ভীষণ সমস্যা তৈরি করতো।" লস অ্যাঞ্জেলসে আধুনিক একটি হেড অফিস রয়েছে হেডস্পেসের "আমার বন্ধুবান্ধব ছিল না যাদের সাথে ঐ সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করা সম্ভব হতো", বলেন রিচার্ড। "প্রথম সেশনের পরই আমি বুঝতে পারি আমার মাথায় আসলে কতগুলো চিন্তা রয়েছে এবং আমার জীবন কতটা ছন্নছাড়া। আমার যে ঐ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসার রাস্তা রয়েছে, তা বুঝতে পেরেও আমি বেশ উত্তেজিত ছিলাম।" রিচার্ড যখন বুঝতে পারেন যে ধ্যান করে কী পরিমাণ লাভ হয়েছে তার, তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে অ্যান্ডির সাথে এই ব্যবসায় যোগ দিতে এবং সবাইকে এবিষয়ে জানাতে। রিচার্ড বলেন, "দক্ষতা অদল-বদলের মত একটি বিষয় ছিল সেটা। সে (অ্যান্ডি) আমাকে ধ্যান করা শেখায়, আর আমি তার ব্যবসা মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য কয়েকটা বুদ্ধি দেই তাকে।" ২০১০ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠান করা শুরু করে তারা। ধ্যানের উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করার পাশাপাশি দলগতভাবে মেডিটেশনের সেশনও পরিচালনা করে তারা। হেডস্পেস অ্যাপের লক্ষাধিক ব্যবহারকারী রয়েছে আয়ের টাকা এবং বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়া সাহায্য নিয়ে সে বছর হেডস্পেস অ্যাপের প্রথম ভার্সন বাজারে ছাড়ে তারা - যেটিতে ১০ মিনিট দীর্ঘ ধ্যানের নির্দেশাবলী সংযুক্ত বেশকিছু ফাইল ছিল। ব্যবসার শুরুতেই ভাগ্য সহায় হয় তাদের। যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান পত্রিকা এক শনিবারে তাদের প্রতিটি কপি'র সাথে হেডস্পেসের একটি করে পুস্তিকা সংযোজন করে। ভার্জিন আটলান্টিক এয়ারলাইন্সও হেডস্পেসের মেডিটেশনের কিছু বুপকরণ তাদের প্লেনের বিনোদন বিভাগে যুক্ত করে। যার ফলে অ্যাপ দ্রুত জনপ্রিয়তা পায় এবং ডাউনলোডের হার বেড়ে যায়। বর্তমানে এই অ্যাপ ব্যবহার করতে মাসে প্রায় ১০ পাউন্ড অর্থ ব্যয় করতে হয়। অ্যাপে নির্দেশনাগুলো দেয়া হয়েছে অ্যান্ডির কন্ঠ ব্যবহার করে। তিনি বলেন: "শুরুর দিকে এটি শুধু আমাদের প্রকল্প ছিল। কেউ আমাদের টাকা দিতো না, তাই আমরা বন্ধুদের কাছ থেকে অর্থ সাহায্য চেয়ে নিতাম।" "এক বন্ধু রেকর্ডিং স্টুড���ও ব্যবহার করতে দেয় বিনামূল্যে, আরেক বন্ধু অফিস দেয় কোনো অর্থ না নিয়ে।" "কিছু মানুষ আমাদের চিন্তাটাকে বিশ্বাস করেছে ও সম্মান করেছে। কেউ কেউ তাদের আগের চাকরির চেয়ে কম বেতনে আমাদের সাথে কাজ করেছে - তাদের প্রতি আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।" ২০১৩ সালে রিচার্ড ও অ্যান্ডি ব্যবসার কেন্দ্র সরিয়ে লন্ডন থেকে লস অ্যাঞ্জেলসে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তখন থেকে হেডস্পেসের সদর দপ্তর লস অ্যাঞ্জেলসে রয়েছে। "লন্ডনকে আমার ভালোবাসি না- বিষয়টা এ রকম নয়", বলছিলেন অ্যান্ডি। "কিন্তু আমাদের দু'জনেরই স্বপ্ন ছিল ক্যালিফোর্নিয়ায় জীবন কাটানোর। আমরা সার্ফিং ও পাহাড়ে হাইকিং করতে ভালোবাসি, আর আমাদের দু'জনের পরিবারও খুশি।" শুরুতে নিজেদের অর্থায়নে পরিচালিত হলেও, ২০১৪ সাল থেকে ব্যবসা ও অ্যাপের কার্যক্রম বড় করার উদ্দেশ্যে বাইরের বিনিয়োগ গ্রহণ করা শুরু করে হেডস্পেস। বর্তমানে সাড়ে ৭ কোটি ডলার লগ্নি করা রয়েছে হেডস্পেসে, যদিও সিংহভাগ মালিকানা অ্যান্ডি ও রিচার্ডের হাতেই। শুরুতে অ্যান্ডি ও রিচার্ড দু'জনই ব্যবসার সব অংশের দেখভালই করতো, কিন্তু ব্যবসা বড় হওয়ার পর থেকে তারা কাজ ভাগ করে নেয়। প্রধান নির্বাহী হয়ে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা ও ৩০০ কর্মীর তত্বাবধানের দায়িত্ব নেন রিচার্ড। অ্যান্ডির মূল কাজ এখনও অ্যাপের সম্প্রসারণের বিষয় চিন্তা করা এবং নেপথ্য কন্ঠ দেয়া। হেডস্পেস বর্তমানে শুধু একটি অ্যাপ নয়। তাদের ৩০০'র বেশি ব্যবসায়িক ক্লায়েন্ট রয়েছে যাদের মধ্যে রয়েছে গুগল, লিঙ্কড ইন, জেনারেল ইলেকট্রিক এবং ইউনিলিভার। এসব প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ও কর্মীদের ধ্যান করতে সাহায্য করে তারা। হার্ভার্ড ও স্ট্যানফোর্ড সহ যুক্তরাষ্ট্রের বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের সাথে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন গবেষণায় সহায়তা করে তারা। পরপর কয়েকটি দু:খজনক ঘটনা অ্যান্ডি পাডিকোম্বের জীবন সম্পূর্ণভাবে বদলে দেয়। +text: সন্দেহভাজন হামলাকারী আকায়েদ উল্লাহ সন্দেহভাজন হামলাকারী ঐ হামলাকারীর নাম আকায়েদ উল্লাহ। বয়স ২৭ বছর। ২০১১ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যান। বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হককে উদ্ধৃত করে রয়টার্স বলছে, আকায়েদ উল্লাহর বাড়ি চট্টগ্রামে এবং তিনি একজন মার্কিন নাগরিক। এ বছর সেপ্টেম্বরের আট তারিখে তিনি সর্বশেষ বাংলাদেশে এসেছিলেন। তার বিরুদ্ধে কোন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার তথ্য নেই পুলিশের কাছে। সোমবার সকালে নিউ ইয়র্কের ব্যস্ত সকালে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র সারা স্যান্ডারস জানিয়েছেন, উল্লাহ এফ৪৩ ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। এর মানে হলো এফ৪১ ভিসায় দেশটিতে যাওয়া কারো সন্তান তিনি। অন্তত ২১ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, এমন নাগরিকদের ভাই বা বোনদের এফ৪১ ভিসা প্রদান করা হয়। তাৎক্ষনিকভাবে আকায়েদ উল্লাহর মোটিভ সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ গণ মাধ্যমকে কিছু জানায়নি। তবে, নিউ ইয়র্ক পুলিশ কমিশনার জেমস ও'নেইল জানিয়েছেন, উল্লাহ পুলিশের কাছে ইতিমধ্যেই স্বীকারোক্তি দিয়েছে, যা এখনি প্রকাশ করবে না কর্তৃপক্ষ। বিস্ফোরণে পর পুরো এলাকাটি বন্ধ করে দেয় পুলিশ আইএসের উল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল কি না সে বিষয়ে কিছু বলেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে, কর্মকর্তারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, আকায়েদ উল্লাহ ইসলামিক স্টেটের প্রোপ্যাগান্ডা বা প্রচারণার বিভিন্ন ভিডিও বিভিন্ন সময় ইন্টারনেটে দেখেছেন বলে তদন্তকারীরা ইতিমধ্যেই প্রমাণ পেয়েছেন। তদন্তের সঙ্গে সম্পর্কিত কয়েকজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, আকায়েদ উল্লাহর সঙ্গে কোন জঙ্গি সংগঠনের সংযোগ রয়েছে এমন তথ্য কোন মার্কিন বাহিনী বা গোয়েন্দা সংস্থার কাছে নেই। নিউ ইয়র্ক ট্যাক্সি ও লিমুজিন কমিশন জানিয়েছে, ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত আকায়েদ উল্লাহর একটি ব্ল্যাক ক্যাব/লিমুজিন গাড়ির ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল। আরো পড়ুন: নিউইয়র্কে হামলা: বাংলাদেশী কম্যুনিটিতে উদ্বেগ নিউইয়র্কে হামলাকারী 'বাংলাদেশী অভিবাসী': পুলিশ যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে শুরুতে ট্যাক্সি ক্যাব চালাতেন তিনি। পরে একটি ইলেকট্রিক কোম্পানিতে চাকরি পান। নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশের কনস্যল জেনারেল শামীম আহসান জানিয়েছেন, ব্রুকলিনে মা, বোন এবং দুই ভাই এর সঙ্গে থাকতেন উল্লাহ। তিনি দেশটির গ্রীনকার্ডধারী। ম্যানহাটনের এই হামলার নিন্দা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ দূতাবাস হামলাকারীর বিচার চেয়ে বিবৃতি দিয়েছে। অ্যামেরিকার নিউইয়র্ক শহরের ব্যস্ততম বাস টার্মিনালে 'সন্ত্রাসী আক্রমণের চেষ্টা'র অভিযোগে পুলিশ একজনকে আটক করেছে। আটক ব্যক্তিকে আইনশৃঙ্খলা বাহ��নী 'বাংলাদেশী অভিবাসী' বলে উল্লেখ করেছে। +text: আফ্রিকান গ্রে প্রজাতির টিয়াপাখি ২০১৫ সালে গ্লেনা ডুরাম তাদের পোষা টিয়া পাখির সামনেই গুলি করে স্বামী মার্টিনকে মেরে ফেলেন - তারপর বন্দুকের নল নিজের দিকে ঘুরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কিন্তু পরে ওই টিয়া পাখিটি মার্টিনের গলা নকল করে বলতে থাকে 'ডোন্ট শ্যুট', জানিয়েছেন মার্টিনের সাবেক স্ত্রী। আদালতে এই হত্যা মামলার শুনানির শেষে জুরি ৪৯ বছর বয়সী মিসেস ডুরামকে ফার্স্ট ডিগ্রি মার্ডারের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করেছে। আগামী মাসে তার সাজা ঘোষণা করা হবে। ২০১৫ সালের মে মাসে ডুরাম দম্পতির স্যান্ড লেকের বাড়িতে ওই হত্যার ঘটনা ঘটেছিল। গ্লেনা ডুরাম নিজে ওই ঘটনায় মাথায় আঘাত পেলেও বেঁচে যান। এই হত্যা মামলার শুনানিতে যখন সাক্ষ্যপ্রমাণ পেশ করা হচ্ছিল, তখন অভিযুক্ত গ্লেনা ডুরাম যে রকম 'অনুতাপহীন' অবস্থায় বসেছিলেন, তা তাকে ব্যথিত করেছে বলে জানিয়েছেন নিহত মার্টিন ডুরামের মা লিলিয়ান। স্বামী মার্টিনকে হত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন গ্লেনা ডুরাম ডুরাম দম্পতির পোষা টিয়া পাখিটি এখন রয়েছে মার্টিনের সাবেক স্ত্রী ক্রিস্টিয়ানা কেলারের কাছে। এই টিয়াটি ছিল আফ্রিকান গ্রে প্রজাতির। তিনি এর আগে জানান, টিয়াটি এমন কিছু কথাবার্তা বলছিল - যা থেকে মনে হচ্ছিল সে যেন ওই হত্যার রাতের কথাবার্তাই পুনরাবৃত্তি করছে। আর সেটা শেষ হচ্ছিল 'ডোন্ট শ্যুট' দিয়ে। মি. ডুরামের বাবা-মাও মনে করছেন, এটা খুবই সম্ভব যে বাচাল টিয়া পাখিটি হত্যার রাতে ডুরাম দম্পতির ঝগড়া শুনেছিল আর তারপর সে তাদের বলা কথাবার্তাই বলছে। তারা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, টিয়া পাখিটি যা শুনত সেটা অক্ষরে অক্ষরে মনে রাখতে পারত। হতে পারে সে রাতে টিয়াটি দু'জনের সব কথাবার্তাই শুনেছিল। মিশিগান অঙ্গরাজ্যের একজন কৌঁসুলি প্রথমে এই টিয়ার আওয়াজকে আদালতে প্রমাণ হিসেবে পেশ করার কথাও ভেবেছিলেন। কিন্তু পরে অবশ্য সে ভাবনা আর কার্যকর করা হযনি। আমাদের পেজে আরও পড়তে পারেন : ইউএনও গ্রেফতারের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী বিস্মিত, প্রশাসনে তোলপাড় ভারতের নতুন রাষ্ট্রপতি সম্বন্ধে দশটি অজানা তথ্য বাদশাহর আদেশে গ্রেফতার হলেন এক সৌদি প্রিন্স লন্ডনে গিয়েও সংলাপে গেলোনা কেন আওয়ামী লীগ? স্বামীকে পাঁচবার গুলি করে মেরে ফেলার অভিযোগে আমেরিকার ���িশিগান অঙ্গরাজ্যে এক মহিলা দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন - যে ঘটনার সাক্ষী থেকে গিয়েছিল তাদের পোষা টিয়া পাখি। +text: বাংলাদেশে সব ধরনের গণপরিবহন আগামী ১১ই এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। শনিবার এই তথ্য জানিয়েছেন সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, '' পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে আগামী ১১ই এপ্রিল পর্যন্ত দেশব্যাপী সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখার অনুরোধ করছি।এ পর্যন্ত আপাতত বন্ধ রাখবেন, পরবর্তী সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে জানা যাবে।'' তবে জরুরি সেবার জন্য পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, পচনশীল দ্রব্য, ত্রাণবাহী গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে। এসব যানবাহনে মানুষ পরিবহন করা যাবে না বলেও তিনি জানান। কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত ২৪শে মার্চ থেকে বাংলাদেশের সব ধরণের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়া হয়। রেল, সড়ক, নৌপথের পাশাপাশি বন্ধ করে দেয়া হয় আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচলও। যাত্রীবাহী যানবাহন বা নৌযান চলাচল না করলেও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে সব ধরনের গণপরিবহন আগামী ১১ই এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। +text: কলকাতায় নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে মুসলিম নারীদের লাগাতার বিক্ষোভ ২৪ ঘন্টা ধরেই শত শত মানুষ ওই ধর্নায় যোগ দিচ্ছেন মঙ্গলবার থেকে। শীত উপেক্ষা করেই তারা প্রথম রাতটা কাটিয়েছেন পোস্টার হাতে নিয়ে, স্লোগান দিয়ে। ওই বিক্ষোভে না আছে কোনও রাজনৈতিক দল না কোনও সেলিব্রিটি। নাগরিকত্ব চলে যাওয়ার আশঙ্কায় একেবারে সাধারণ মানুষ প্রতিবাদে নেমেছেন - যাদের একটা বড় অংশ নানা বয়সের মুসলমান নারী - বৃদ্ধা, স্কুল ছাত্রী, গৃহবধূ। তাদের অনেকেই জীবনে প্রথমবার কোনও ধরণের বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন। পার্ক সার্কাস ময়দানের প্রবেশ পথ থেকেই দেখা যাচ্ছিল দলে দলে নারী পুরুষ - কেউ আবার বাচ্চার হাত ধরে ভেতরে ঢুকছেন। ভেতরে তখন চলছিল সেই 'আজাদি' স্লোগান গুলি - যা বছর কয়েক ধরেই বিজেপি বিরোধী যে কোনও প্রতিবাদ বিক্ষোভে শোনা যায়। সেই সাথে জামিয়া মিলিয়া আর জহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ওপরে সহিংসতার বিরোধীতা করেও স্লোগান চলছিল মাঝে মাঝে। মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে কলকাতায় এই লাগাতার বিক্ষোভ চিৎকার করে স্লোগান দিচ্ছিলেন দশম শ্রেনীর ছাত্রী সাজিয়া হুসেইন। কমাস পরেই মাধ্যমিক বোর্ডের পরীক্ষা, তার মধ্যেই হাজির থাকছেন এই বিক্ষোভে। তিনি বললেন, "আমারও অধিকার আছে এই দেশে থাকার। হতে পারে কারও কাছে নথি নেই, কিন্তু তাই বলে আমি হিন্দুস্তানের নাগরিক নই? কোনও নথিতে একটা সামান্য বানান ভুলের জন্য কাউকে নাগরিক নয় বলে দেওয়া হবে? এটা ঘোর অন্যায়।" পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন গৃহবধূ সালমা খাতুন। "ছোটবেলা থেকেই আমরা পড়েছি 'মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান'। সেটা শুধু পড়ার জন্য পড়ি নি, মাথায় ঢুকিয়ে নিয়েছি। কিন্তু দু:খের কথা আমাদের প্রধানমন্ত্রী আর তার সঙ্গী অমিত শাহ বোধহয় এগুলো পড়েন নি, সেজন্যই আজ তারা দেশের এই দুর্দশা করে ছাড়ছেন।" ওই জমায়েতের মধ্যেই হাত মুঠো করে গলা ফাটিয়ে স্লোগান দেওয়ার কারণে নারীদের ভিড়েই নজর পড়েছিল এক বয়স্কার দিকে - খালিদা খাতুন। জীবনেও কোনওদিন কোন সভা-সমাবেশে আসেন নি। কিন্তু কাল রাত কাটিয়েছেন এই সমাবেশেই। "আমার দেশ হিন্দুস্তান কিছুতেই ছাড়ব না। ৭০ বছর বয়স হয়েছে, জীবনটাই যখন এখানেই কাটিয়েছি, বাকিটাও এখানেই থাকব। বলা হচ্ছে মুসলমানদের পাকিস্তানে চলে যেতে। কেন নিজের দেশ ছেড়ে অন্য দেশে যাব? আমি কি পাকিস্তানি?"দৃঢ় গলায় বলছিলেন মিসেস খাতুন। পাশ থেকে আরেক নারী মুখ বাড়িয়ে বলছিলেন, "একের পর এক আইন হয়েছে - তিন তালাক প্রথা রদ হয়েছে, অযোধ্যার রায় বেরিয়েছে -- কোনওদিন আমরা প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নামি নি। কিন্তু এটা তো নিজের নাগরিকত্বের প্রশ্ন.. তাই এক সাধারণ গৃহবধূ হয়েও জীবনের প্রথম কোনও বিক্ষোভে যোগ দিতে বাধ্য হয়েছি।" কলকাতায় নাগরিকত্ব আইন বিরোধী লাগাতার সমাবেশের একাংশ বিক্ষোভে দৃশ্যতই মুসলমানদের জমায়েত বেশি। কিন্তু কথা হল অনেক হিন্দুর সঙ্গেও। তেমনই দুজন দীপান্বিতা রায় আর ঋতব্রত ঘোষ। দীপান্বিতা বলছিলেন, "মহিলাদেরই প্রতিবাদে বেশি করে এগিয়ে আসা উচিত। কারণ যখন ডিটেনশান ক্যাম্পে পাঠানো হবে, সেখানে মহিলাদের সঙ্গে যে কী কী হতে পারে, সেসব তো পৃথিবীর নানা দেশের ঘটনা আমরা দেখি! তাই ভয়টা মহিলাদেরই বেশি।" ঋতব্রত ঘোষের কথায়, "আমাদের প্রত্যেকের নাগরিকত্ব প্রশ্নের মুখে। কোটি কোটি মানুষকে এখন একটা পরীক্ষা দিতে হবে। সেই পরীক্ষায় পাশ করলে তবেই থাকতে পারব, নয়তো ডিটেনশানে যেতে হবে!" এই বিক্ষোভ কোনও একটি দল বা সংগঠনের সমাবেশ নয়। আর কোনও ধর্মীয় উক্তিও যাতে না করা হয়, সেদিকেও নজর রাখছিলেন আয়োজকরা - যারা মূলত এসেছেন মাস কয়েক আগে থেকে গড়ে ওঠা কিছু ফেসবুক গ্রুপ এবং কিছু সামাজিক সংগঠন থেকে। আয়োজকদের অন্যতম, ফরিদুল ইসলাম বলছিলেন, "মি. মোদী বা বিজেপি দেখানোর চেষ্টা করছে যে শুধু মুসলমানরাই প্রতিবাদে নেমেছে। কিন্তু সেটা একদম অসত্য। হিন্দু মুসলমান, ছাত্র যুব, নারী পুরুষ - প্রত্যেকেই আজ রাজপথে - কারণ প্রত্যেকের নাগিরকত্বই তো প্রশ্নবিদ্ধ হবে এই আইনে।" যখন সমাবেশ থেকে বেরিয়ে আসছি, তখনও মানুষ আসা শেষ হয় নি। আয়োজকরা বলছিলেন সকালের দিকে কম মানুষ থাকছেন। কারণ প্রত্যেকেরই ঘরের কাজকর্ম থাকে। সেসব সেরে কিছু খেয়ে আবার দুপুর থেকে জমায়েত বড়ো হতে শুরু করেছে। যা সন্ধ্যে বা রাতে শত শত মানুষের সমাবেশে পৌঁছচ্ছে -- ঠিক যেমনটা গত প্রায় ২৫ দিন ধরে চলছে দিল্লির উপকন্ঠে শাহিনবাগে। ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় এক লাগাতার প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। +text: ২০১৭ সালের ২৫ আগষ্ট থেকে হাজার-হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসতে থাকে বলা হচ্ছে, সৌদি আরবে হাজার হাজার রোহিঙ্গা রয়েছে যারা বাংলাদেশী পাসপোর্ট ব্যবহার করে সেখানে গেছে, এবং কাজের মেয়াদ শেষ হবার পর অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। তাদেরকেই বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে চায় সৌদি আরব। কর্মকর্তারা বলছেন, সৌদি আরবে থাকা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ নিতে চায় না। কিন্তু সেটা করতে গেলে যদি বাংলাদেশের শ্রমবাজারে কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়ে - সে কথা ভেবে সরকার সুনির্দিষ্ট কোন অবস্থান তুলে ধরতে পারছে না। কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, আগামী ১২ই ফেব্রুয়ারি বুধবার থেকে ঢাকায় দুই দেশের যৌথ কমিশনের দু'দিনব্যাপী বৈঠকে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে আলোচনায় আনা হতে পারে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বিবিসিকে বলেছেন, অন্য কোনো দেশ যদি তাদের দেশে থাকা রোহিঙ্গাদের কাউকে ফেরত পাঠাতে চায়, তাহলে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো উচিত বলে তিনি ���নে করেন। অবশ্য একইসাথে মি: মোমেন বলেছেন, এ নিয়ে সৌদি সরকার বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। তবে কূটনৈতিক সুত্রগুলো বলছে, সৌদি সরকার বাংলাদেশের পার্সপোর্টধারী ৪২ হাজার রোহিঙ্গাকে চিহ্নিত করে তাদের ফেরত নেয়ার তাগিদ দিয়ে বাংলাদেশকে চিঠিও দিয়েছে। এমন তাগিদ দেয়ার ক্ষেত্রে সৌদি সরকার এই রোহিঙ্গাদের 'বাংলাদেশের পাসপোর্ট ব্যবহারের বিষয়টি' উল্লেখ করেছে বলে সূত্রগুলো জানাচ্ছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৯০-এর দশকের শেষে তিন লাখের মতো রোহিঙ্গা সৌদি আরবে গিয়েছিল। তাদের একটি বড় অংশকে সৌদি সরকার শরণার্থী হিসেবে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে। কিন্তু ২০১৪ সালে এবং তার পরে বাংলাদেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে যে রোহিঙ্গারা সেখানে গেছে এবং সেখানে কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর অনিয়মিত হয়ে পড়েছে, তাদের নিয়েই তোলা হয়েছে প্রশ্ন । বিবিসি বাংলায় আরো খবর: রোহিঙ্গারা বাংলাদেশী পাসপোর্ট পায় কিভাবে? ১৩ রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠিয়েছে সৌদি আরব রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশে যাচ্ছে, এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ বলছিলেন, দুই দেশের যৌথ কমিশনের বৈঠকে সৌদি আরব যদি বিষয়টা উত্থাপন করে, তখনই বিস্তারিত জেনে বাংলাদেশ তাদের অবস্থান তুলে ধরবে। "বাংলাদেশিদের পাসপোর্ট বা কাজের মেয়াদ শেষ হলে তারা বিভিন্ন সময় জানায়। তখন যাচাই-বাছাই করা হয়। আর বাংলাদেশ ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। আমার মনে হয় না, এনিয়ে কোনো সমস্যা হবে। দুই দেশে সম্পর্ক এখন খুবই ভাল। ফলে কোনো সমস্যা আমরা দেখি না।" "যৌথ কমিশনের বৈঠকে এই বিষয় যদি তারা উত্থাপন করে, সেইভাবে আমরা অবস্থান তুলে ধরবো" - বলেন মি. মসিহ। কূটনেতিক অন্য সূত্রগুলো বলছে, সৌদি আরবের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় ভাল অবস্থায় রয়েছে এবং বাংলাদেশ তা ধরে রাখতে চাইছে। তা ছাড়া সৌদি আরবে এখন ২০ লাখের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করছেন। এই দু'টো বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ সৌদি আরবের সাথে কঠোর কোনো অবস্থান নিতে চাইছে না। রোহিঙ্গারা যে পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে গেছে তা আসলে সঠিক কিনা, এবং এসব যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজন আছে - বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এমন বিষয়গুলো তুলে ধরা হচ্ছে সৌদি আরবের কাছে। কক্সবাজারে রো���িঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করেন শিউলী শর্মা। তিনি বলছিলেন, বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে রোহিঙ্গাদের বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক বলেই তারা মনে করেন। "রোহিঙ্গারা যাতে বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিতে না পারে, সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের আরও কঠোর হওয়া উচিত।" টেকনাফ থেকে রোহিঙ্গাদের একজন নেতা মোহাম্মদ নূর বলছিলেন, বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে তাদের কারও পক্ষে বিদেশ যাওয়া অনেক কঠিন বলে তারা মনে করেন। এরপরও কেউ গিয়ে থাকলে সেটা বাংলাদেশ এবং সৌদি সরকার খতিয়ে দেখবে, বলেন তিনি। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: 'ঘরের বাইরে যাবেন না', চীনে আরো তিন শহরে নির্দেশ প্যারাসাইট: যাদের জীবন উঠে এসেছে অস্কারজয়ী ছবিতে যুব বিশ্বকাপ ফাইনালের পর কেন দুদলের হাতাহাতি? সৌদি সরকার বাংলাদেশের পাসপোর্টধারী ৪২ হাজার রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য যে তাগিদ দিচ্ছে, সে ব্যাপারে বাংলাদেশ কী অবস্থান নেবে তা এখনও ঠিক করতে পারেনি সরকার। +text: কমান্ডো সিনেমার একটি ছবি কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা দেব অভিনীত বাংলাদেশি সিনেমা 'কমান্ডো'র টিজার ২৫শে ডিসেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। টিজারটি প্রকাশের পরই ধর্ম অবমাননা করা হয়েছে এমন অভিযোগ এনে সমালোচনা হয় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। পল্লবীর একটি মসজিদের খতিব আব্দুল হাই মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ তার ভেরিফাইড ফেসবুক পাতায় টিজারটির সমালোচনা করেন। তিনি সেখানে টিজারের তিনটি স্ক্রিন শট দিয়ে লেখেন "১ম ছবিটি দেখুন। কালেমা খচিত পতাকা, পতাকার নীচের অংশে AK-47 এর সিম্বল । পতাকার পেছন থেকে অস্ত্র হাতে বেরিয়ে আসছে কথিত সন্ত্রাসীরা । ২য় ছবিটিতে দেখুন। চার দিকে আরবি লেখা। টিজারের এই অংশে দেখানো হচ্ছে কথিত সন্ত্রাসীরা সুন্নাতি পোষাক পড়ে "নারায়ে তাকবির" "আল্লাহু আকবর" স্লোগান দিচ্ছে"। তিনি আরো লেখেন "এই মুভিতে দেখাবে ইসলামি জঙ্গিবাদ দমনে নায়ক দেব এসে হাজির হয়েছে। আর জঙ্গিদের সিম্বল হিসাবে কালিমা খচিত পতাকা ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে সুস্পষ্টভাবে ইসলামকে ডিমোনাইজ করা হচ্ছে। ভিলেন বানিয়েছে ইসলামকে । যা ইচ্ছাকৃত ইসলাম বিদ্বেষ"। তিনি প্রশ্ন রাখেন "ইসলাম কখনো জঙ্গী ধর্ম নয়, একই সাথে ধর্মের নামে কেবল ইসলামেই উগ্রতা আর জঙ্গীবাদ আছে এমন নয়, সব ধর্মেই আছে, তাহলে মুভিতে কেনো ইসলাম আর কলেমার পতাকারই শুধু ব্যাবহা��?" বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত কথা বলার জন্য আব্দুল হাই মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ'র সাথে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কোন মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। সিনেমার টিজার নিয়ে ধর্ম অবমাননার যে অভিযোগ উঠেছে সেটা নিয়ে এই সিনেমার প্রযোজক সেলিম খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, যখনই তিনি দেখেছেন এটা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে তখনি টিজারটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন "আমি নিজে মুসলমান, ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করার দুঃসাহস আমার নেই। জঙ্গিবাদ সরকার কীভাবে দমন করছে সেটাই সিনেমায় দেখানো হয়েছে"। তিনি বলেন "টিজারটি কলকাতা থেকে সিনেমার অভিনেতা দেব ,তিনি আপলোড করেন। আমি তাকে জানাই এটা নিয়ে আমার দেশে সমস্যা হচ্ছে, তিনি টিজারটা সরিয়ে ফেলেন"। বিদেশী শিল্পী হিসেবে কেউ যদি বাংলাদেশে কাজ করতে চান তাকে সরকারের অনুমতি নিতে হয়। মি. খান জানান "যখন দেবের অভিনয়ের বিষয়টা ফাইনাল হয় তখন আমরা তথ্য মন্ত্রণালয়ে অনুমতি নেই। তখন সিনেমার গল্পের অনুমোদন নেয়া হয়েছে এবং আমরা স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী কাজ করছি। এখানে ধর্ম অবমাননার কোন প্রশ্নই আসে না"। এদিকে বাংলাদেশ সেন্সর বোর্ডের সদস্য খোরসেদ আলম খসরু বলছিলেন এখানে দুইটি বিষয় রয়েছে। তিনি বলছিলেন,প্রথমত একটি সিনেমা মুক্তি পাওয়ার পর সেটা সম্পূর্ণ দেখে মন্তব্য করা উচিত। "টিজার দেখে কোন মন্তব্য করা বা বিতর্ক সৃষ্টি করা উচিত না" বলছিলেন তিনি। দ্বিতীয় বিষয় হল, সিনেমা বিষয়ক যে নীতিমালা রয়েছে সেটা মেনে চলা। মি. খসরু বলছিলেন "বাংলাদেশে যে নীতিমালা রয়েছে সেখানে সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র দেয়ার আগে সিনেমার একটা পোষ্টারও প্রকাশ করার নিয়ম নেই। সেখানে সিনেমা শেষ করার আগে, সেন্সর বোর্ডের অনুমোদনের আগে যে টিজার প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে আমি বলবো নিয়ম ভাঙ্গা হয়েছে"। প্রযোজক সেলিম খান এই বিষয়ে বলেন "আমরা অনলাইন প্লাটফর্মে রিলিজ করেছিলাম, কোন সিনেমা হলে টিজার মুক্তি দেইনি"। তাই নীতিমালা ভঙ্গ হচ্ছে না বলে তিনি মনে করেন। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচন: পর্দার ভেতরে-বাইরে যা ঘটেছিল যারা কোভিড টিকা নেবে না তাদের তালিকা করবে স্পেন হজ ও ওমরা ব্যবস্থাপনায় আসছে কঠোর আইন, এজেন্সির বিরোধিতা চাল মজুদকারীদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিতে পারছে না কেন বাংলাদেশের এ�� খতিব ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তোলার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের নির্মাণাধীন সিনেমা 'কমান্ডো'র টিজার। +text: ২০১৬ সালের নভেম্বরে ঘটনার পর আল-জাজিরা টেলিভিশনে যে প্রতিবেদন প্রচার হয়, সেখানে ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মাথায় হেলমেট এবং বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পড়া পুলিশ সদস্য সাঁওতালদের বাঁশ এবং ছনের তৈরি ঘরের কাছে গিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। (ফাইল ছবি) বিক্ষোভকারী সাঁওতালদের কয়েকজন বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, পুলিশের চার্জশীটে মূল আসামীদের বাদ দেওয়া ও পুলিশের জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে না আসার প্রতিবাদে তারা গোবিন্দগঞ্জে রাস্তা অবরোধ করেছেন। সাঁওতালদের একটি সংগঠন, ভূমি উদ্ধার সমিতির সভাপতি সিলিমন বাসকে অভিযোগ করেন, "সেসময় ঐ ঘটনার পেছনে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের একজন নেতা জড়িত ছিলেন - যার নাম উঠে আসেনি পিবিআইয়ের তদন্তে।" ক্ষমতাসীন দল অবশ্য শুরু থেকেই ঐ ঘটনার সাথে তাদের কোন প্রকার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। "ঘটনার সময় ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে সারা পৃথিবী দেখেছে যে পুলিশই আগুন লাগিয়েছে। তারপরও পিবিআইয়ের তদন্তে পুলিশের জড়িত থাকার বিষয়টি না আসা দু:খজনক।" তবে পিবিআইয়ের তদন্তে পুলিশের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে তারা। পিবিআইয়ের গাইবান্ধা জেলার অতিরিক্ত এসএসপি আবদুল হাই সরকার বিবিসিকে জানান, "ঐ ঘটনায় জেলা পুলিশের একজন অতিরিক্ত এসপি'র নেতৃত্বে পরিচালিত বিভাগীয় তদন্ত এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রতিবেদনে পাওয়া তথ্যের সাথে পিবিআইয়ের তদন্তের পাওয়া তথ্যের মিল রয়েছে।" "তাদের তদন্তেও ঐ ঘটনায় পুলিশের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি, এবং আমাদের তদন্তেও আমরা পুলিশের সংশ্লিষ্টতা পাইনি।" যদিও ঘটনার পরপরই অভিযোগ ওঠে যে পুলিশের উপস্থিতিতেই একটি বিরোধপূর্ণ জমি থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদের সময় তাদের ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। এরকম একটি ভিডিও তখন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। এমনকি ঘটনার কয়েকদিন পর বিচার বিভাগীয় এবং পুলিশের বিভাগীয় তদন্তেও উঠে আসে যে ঐ ঘটনায় পুলিশের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে -এমন খবর সেসময় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। ঐ ঘটনায় কয়েকজন সাঁওতাল নিহত হন এবং অন্তত কুড়িজন সাঁওতাল আহত হন। আরো পড়তে পারেন: সাঁওতালপল্লিতে আগুন লাগানো দুই সদস্যকে খুঁজে পেয়েছে পুলিশ সাঁওতাল গ্রামে আগুন: আজও চিহ্নিত হয়নি দোষী কে সাঁওতাল পল্লীতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ অস্বীকার পুলিশের পুলিশ ঘর-বাড়িতে আগুন দিচ্ছে, তার ছবিও তোলা হচ্ছে। (ফাইল ছবি) কী ঘটেছিল সেসময়? ২০১৬ সালের ৬ই নভেম্বর গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের চিনিকলের বিরোধপূর্ণ জায়গা থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদের সময় স্থানীয়দের সাথে সাঁওতালদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেসময় আল জাজিরা টেলিভিশনের একটি প্রতিবেদন প্রচারিত হয়, যার ভিডিওতে দেখা যায় সাঁওতালদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হচ্ছে। সাঁওতালদের বসতির পাশেই দাঁড়িয়ে পুলিশকে গুলি এবং কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়তে দেখা যায় ঐ ভিডিওতে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে তাদেরই মধ্য থেকে মাথায় হেলমেট এবং বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পড়া একজন পুলিশ সদস্য সাঁওতালদের বাঁশ এবং ছনের তৈরি ঘরের কাছে গিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দিতে দেখা যায়। ভিডিওতে পুলিশকে আগুন দিতে দেখা গেলেও ঐ অভিযোগ শুরুতে অস্বীকার করে আসছিল তারা। পরে আদালত ঐ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেসময় হওয়া বিচার বিভাগীয় তদন্তে পুলিশের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় বলে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। পরে মার্চ মাসে পুলিশের বিভাগীয় তদন্তেও উঠে আসে যে 'আগুন লাগানোর ঘটনায় পুলিশের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে'। পুলিশ মহাপরিদর্শকের পক্ষ থেকে আদালতে দাখিল করা একটি প্রতিবেদনে সরাসরি আগুন লাগানোর সাথে জড়িত থাকায় দুইজন পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা এবং তাদের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে উঠে আসে। ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনার দিন দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৫৮ জন সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। শুরুতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ঐ ঘটনার তদন্তের দায়িত্বে থাকলেও বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু হওয়ার পর তারা তদন্ত কাজ বন্ধ রাখে। এরপর তদন্তের দায়িত্ব আসে পিবিআইয়ের ওপর - প্রায় আড়াই বছর তদন্তের পর রবিবার তারা ৯০ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। বাংলাদেশের গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ২০১৬ সালের নভেম্বরে সাঁওতালদের একটি পল্লীতে হামলার ঘটনায় ৯০ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে তা প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ করছেন সাঁওতালরা। +text: ঢাকায় ইসলামী আন্দোলনের মিছিল (ফাইল ছবি) কিন্তু বাংলাদেশে ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ -ধর্মীয় ইস্যুর বাইরে কোনো সামাজিক ইস্যুতে তাদের রাজপথে দেখা যায় না। কেন তারা এখন সেটির প্রয়োজন বলে মনে করছেন? খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের বিবিসি বাংলার শাহনাজ পারভীনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন "এই সময়টা সঠিক সময়, কারণ অতি সম্প্রতি যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেটা নারী নির্যাতনের আদি রূপ ধারণ করেছে, ক্ষমতাসীনদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে এমনটা ঘটেছে"। প্রশ্ন: কিন্তু ইসলামপন্থী দলগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ সামাজিক ইস্যুতেতাদের রাজপথে দেখা যায় না? "না ঠিক নয়। কুমিল্লায় মেয়েটার হত্যার পর আমরা প্রতিবাদ করেছি। মানববন্ধন করেছি"। প্রশ্ন: সমাবেশ হয়তো আপনারা করছেন? কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর এজেন্ডাতে বিভিন্ন সামাজিক ইস্যু কতোটা থাকে? "থাকবেনা কেন। অবশ্যই থাকে। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো যেসব বিষয়ে কথা বলে আমরাও সেসব বিষয়ে বলি। হতে পারি আমরা কিছু বিষয়ে ফোকাস করি। কিন্তু মিডিয়ার যারা নিউজ কাভার করে তারা ইসলামপন্থী দল হলেই মনে করে ধর্মের কথাই শুধু বলবে। সমাজ আমরা যেহেতু বদলাতে চাই, সমাজের সমস্যা দেশের জন্য বড় সমস্যা। এগুলো সমাধান করতে হবে। বর্তমানে এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে"। প্রশ্ন: কিন্তু একটা অভিযোগ কিছু দলের বিরুদ্ধে ওঠে, নারীদের ইস্যুটা যখন- আসে নারীদের পোশাক নিয়ে মন্তব্য করা হয়, তাদের চলাফেরা নিয়ে মন্তব্য করা হয়। নির্যাতনের ঘটানর ক্ষেত্রে দায়ভার অনেকটা নারীদের ওপর দিয়ে দেয়া হয়। আপনার কাছে কি মনে হয় এরকম বিভিন্ন ইসলামপন্থী দলগুলো করে? "এগুলো কিন্তু সাইড প্রশ্ন। কেউ এগুলো তুলতে পারে। দলগতভাবে আমরা এগুলো ধরছিনা। যে সমস্যাগুলোর কথা বলছি নারীরা নির্যাতিত হচ্ছে, অনেক কারণ আছে। নারীদের ওপর এসিড মারা হচ্ছে, ধর্ষণ করা হচ্ছে। সবচেয়ে জঘন্যতম অপরাধ করা হচ্ছে। করছে কারা? ক্ষমতাসীনদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে করা হচ্ছে"। প্রশ্ন: আপনি ক্ষমতাসীনদের কথা আবার বলছেন। কিন্তু কেন আপনাদের বিরুদ্ধে সামাজিক ইস্যু নিয়ে কথা না বলার এই অভিযোগটা আসে? "অভিযোগটা আসে আমরা যে অন্য কথাও বলি এজন্য আসে। সত্য কথা আমরা শুধু নারীদের বিষয়ে কথা বলি না অন্য অনেক বিষয়েও বলি। যেগুলো সেক্যুলাররা বলতে চায় না, তারা মনে করে এগুলো ফোকাসে আসা উচিত না। কিন্তু আমরা এগুলো ফোকাস দেই বলে আমাদের ক্রেডিবিলিটি নষ্ট করার জন্য তারা আমাদের বিরুদ্ধে প্রচার করে। যারা নির্যাতিত, অসহায় নারী-পুরুষ যেই হোক, এগুলোর সমাধান করতে হবে। সমাজের সমস্যা সমাধানে আমাদের কাজ করতে হবে"। প্রশ্ন: এই ধরনের সমস্যা সমাধানে ইসলামপন্থী দলগুলো কী ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে? "কোনো ধার্মিক মানুষ কোনো মহিলার ওপর অত্যাচার চালাতে পারে না। অধার্মিকেরাই, দুশ্চরিত্রবানরাই এ কাজ করে থাকে। মানুষ যদি ধার্মিক হয়- মহিলারা ধার্মিক হলে, পুরুষেরা ধার্মিক হলে, ধর্মের প্রসার ঘটলে সমাজে অত্যাচার-অনাচার কমে যাবে"। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতন, হত্যা ও ধর্ষণের প্রতিবাদে আজ সারাদেশে মানববন্ধন করবে খেলাফত মজলিস। +text: প্রশ্ন ফাঁস মহামারীর রূপ নিয়েছে সিআইডি'র কর্মকর্তারা বলেছেন, অভিযুক্তরা ছাপাখানা এবং কোচিং সেন্টার থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় একটা চক্র হিসেবে কাজ করে আসছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির একটি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার অভিযোগ নিয়ে সিআইডি পুলিশ তদন্ত শুরু করেছিল দেড় বছর আগে। এখন তদন্ত শেষ করে চার্জশিট বা অভিযোগপত্র চূড়ান্ত করা হয়েছে। ঈদের পর আদালতে এই অভিযোগপত্র পেশ করা হবে বলে সিআইডি'র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। কীভাবে প্রশ্ন ফাঁস হয়? সিআইডি'র এই তদন্ত দলের প্রধান এবং বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেছেন, ছাপাখানা থেকে প্রশ্ন ফাঁস করে তা চড়া দামে বিক্রি করা পর্যন্ত একটি চক্র কাজ করে। আরেকটি চক্র প্রশ্ন পাওয়ার পর সেগুলোর সমাধান করে ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে তা সরবরাহ করে। এই দু'টি চক্রকেই তারা চিহ্নিত করতে পেরেছেন বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। প্রশ্ন ফাঁসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মি. ইসলাম বলেছেন "ছাপাখানা থেকে এবং পরে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস করার সঙ্গে এই দু'টি চক্রেরই যারা জড়িত ছিল, তাদের মোটামুটি সকলকে চিহ্নিত করে অভিযোগপত্র চূড়ান্ত করেছি। এখন ১২৫জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছি। আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে তদন্ত করছি। তাদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ পেলে আমরা সম্পূরক চার্জশিট দেবো।" গত কয়েক বছরে প্রথম শ্রেণির সরকারি চাকরির বিসিএস থেকে শুরু করে ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষা এবং একের পর এক বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উ��েছিল। যদিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির একটি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছিল সিআইডি পুলিশ। কিন্তু সিআইডি দাবি করেছে, তাদের তদন্তে চিহ্নিতরা সব ধরণের প্রশ্ন ফাঁস বা জালিয়াতির সাথে জড়িত ছিল। সিআইডি'র কর্মকর্তা মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেছেন, চিহ্নিতদের যাদের গ্রেফতার করা গেছে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্তে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে চক্রগুলোর কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হয়েছেন। স্কুল পর্যায়েও প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে "এরা যত পরীক্ষা হতো, সব পরীক্ষারই প্রশ্ন ফাঁস করেছে। তারা স্বীকারও করেছে যে তারা বিভিন্ন ধরণের ব্যাংক এবং সরকারি অন্যান্য সব প্রতিষ্ঠানের সব নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করেছে। এই চক্র বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস করার কথা স্বীকার করেছে।" যারা অভিযুক্ত হয়েছে তারা কারা সিআইডি'র অভিযোগপত্রে যে ১২৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, তাদের ৪৭জন এখন গ্রেফতার রয়েছে। তবে সিআইডি পুলিশ বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে যে, অভিযুক্তদের বেশিরভাগই অর্থাৎ ৮৭ জনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক জিনাত হুদা ওয়াহিদ বিষয়টাকে বিব্রতকর বলে মনে করেন। তিনি বলছিলেন "এটি আমাদের জন্য বিব্রতকর। এবং যে বিশাল-সংখ্যক আমাদের শিক্ষার্থী, তাদের জন্যও এটা বিব্রতকর। প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে যে ক'জন শিক্ষার্থীর কথা এসেছে, সেই সংখ্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থীর তুলনায় নগণ্য। কিন্তু তারাও কেন এবং কীভাবে এমন চক্রের সাথে জড়িত হলো, এমন অনেক প্রশ্ন আসে।।" এই বিষয়ে বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: প্রশ্ন ফাঁসের 'কেন্দ্রবিন্দুতে কোচিং বাণিজ্য' 'শিক্ষার্থীদের হাতে প্রশ্ন যারা পৌঁছে দিয়েছে তারা কোথায়?' 'ফাঁসের চক্র' আটক, কিন্তু তাদেরকে প্রশ্ন দেয় কে? কী বলছেন কোচিং সেন্টারের মালিকদের সংগঠন প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে কয়েকবছর ধরে মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাগুলোর সময় সামাজিক মাধ্যমের ওপর নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ রাখতেও দেখা গেছে। সিআইডি বলেছে, তাদের তদন্তে ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করা হলেও কোচিং সেন্টার এবং ছাপাখানাসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযুক্তরা চক্র হিসেবে কাজ করেছে। তবে কোচিং সেন্টারের মালিকদের সংগঠনের নেতা তাসলিমা গিয়াস বলেছেন, সব সময় কোচিং সেন্টারের বিরুদ��ধে ঢালাও অভিযোগ আনা হয় বলে তারা মনে করেন। "দেশে দুই তিন লাখ কোচিং সেন্টার আছে। এত কোচিং সেন্টারের মধ্যে কোন পরিচিত কোচিং সেন্টার এসব জড়িত থাকতে পারে না। আমরা যারা কোচিং সেন্টারের ব্যবসা করে থাকি, তারা প্রশ্ন ফাঁসের সাথে কোনভাবে সম্পৃক্ত হতে পারি না। কারণ প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তির প্রশ্ন থাকে।" "দু'একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর কথা এসেছে, তারা যদি কোন কোচিং সেন্টারে পড়ায় এবং তারা বাইরে গিয়ে কিছু করলে, সেজন্য কোচিং সেন্টার দায়ী হয় বলে আমার মনে হয় না।" সিআইডি'র অভিযোগ পত্রের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৬৩ ধারায় এবং পাবলিক পরীক্ষা আইনে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। সিআইডি পুলিশ জানিয়েছে, প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে যে ৪৭ জন গ্রেফতার রয়েছে, তাদের গ্রেফতারের সময় ৪০ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছিল। এই অর্থের উৎস জানার জন্য মানিলন্ডারিং আইনে মামলাতেও তদন্ত চলছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: 'টাকার সঙ্কট, তাই পুলিশের ওপর হামলা' ধান কাটা: শুধু ফটোসেশন নাকি কৃষকের সহায়তা 'ফ্ল্যাটের সবাইকে ধর্ষণ করে উচিত শিক্ষা দাও' জিয়াউর রহমানের মৃতদেহের খোঁজ মিলল যেভাবে বাংলাদেশে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি'র কর্মকর্তারা বলেছেন, উচ্চ-শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষা এবং বিসিএস ও ব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থার নিয়োগসহ পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস এবং জালিয়াতির সাথে জড়িত চক্রকে চিহ্নিত করা হয়েছে। +text: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায়শ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে রোববার সকালে এই ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলছেন, রবিবার সকালের দিকে উখিয়ার কুতুপালংয়ের একটি অতালিকাভুক্ত আশ্রয় শিবিরে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে গুলিবিদ্ধ দুই রোহিঙ্গা পুরুষের মৃতদেহ পেয়েছে। আরো পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্প: রাতের আঁধারে নিয়ন্ত্রণ করে কারা রোহিঙ্গা শিবিরে সহিংসতার মূলে ইয়াবার টাকার ভাগ সংক্রমণ রোধে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে? পুলিশ জানিয়েছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে তারা ধারণা করছেন। বাংলাদেশে সব মিলিয়ে এগারো লাখের বেশি রোহিঙ্গা রয়েছে। তাদের অনেকেই অন���বন্ধিত আশ্রয় শিবিরগুলোয় বসবাস করে। এর আগেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংঘর্ষ এবং হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: করোনাভাইরাসে চারমাসের মধ্যে সবচেয়ে কম আক্রান্ত ও মৃত্যু হামলায় বেঁচে যাওয়া নয় জনসহ লিবিয়া থেকে দেশে ফিরলেন ১৬৪ বাংলাদেশি সাক্কারার মরুভূমিতে পাওয়া গেল ডজন ডজন মমি ‘ইসলাম সঙ্কটে‘- প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁর এই বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশের কক্সবাজারের উখিয়ায় কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত দুইজন নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছে আরো অন্তত ১০ জন। +text: যুক্তরাজ্যে এক ব্যক্তি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় এক নারীর সাথে যৌন সম্পর্কের পর সুপার গনোরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন যুক্তরাজ্যে তার একজন নিয়মিত সঙ্গী আছে । কিন্তু তিনি রোগটিকে আক্রান্ত হয়েছেন দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় এক নারীর সাথে যৌন সম্পর্কের পর। এখন দেশটির জনস্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, এই প্রথম বারের মতো অ্যান্টিবায়োটিকে রোগটিকে সারানো যায়নি। স্বাস্থ্য বিভাগ এখন লোকটির অন্য একজন যৌন সঙ্গীকে খুঁজছে যাতে করে সংক্রমণ আর ছড়াতে না পারে। জানা গেছে চলতি বছরের শুরুতেই এই রোগে আক্রান্ত হন ওই ব্যক্তি। আয়ারল্যান্ডের প্রথম নগ্ন সৈকত আসলে কেমন আয়কর দিলে কি মুসলিমদের যাকাত দিতে হয়? ঢাকায় মরদেহ কবর দেয়ার জায়গার এত অভাব কেন? পরে নিয়মিত চিকিৎসা হিসেবে যে অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয় এ ধরনের রোগীকে সেটি দিলেও তাতে সেরে উঠেননি তিনি। ইংল্যান্ড জনস্বাস্থ্য বিভাগের ড: গুয়েন্ডা হুগেজ বলেন, "এই প্রথম বারের মতো একটি ঘটনা পাওয়া গেলো যা উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিকসহ অন্য ঔষধের বিরুদ্ধে এতো শক্তিশালী প্রতিরোধ তৈরি করতে পারে"। এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউরোপিয়ান সেন্টর ফর ডিজিজ কন্ট্রোল একমত হয়েছে যে এটাই এ ধরনের প্রথম ঘটনা বিশ্বে। গনোরিয়া কী? অনিরাপদ যৌন সম্পর্কই গনোরিয়ার জন্য দায়ী এ রোগের মূল কারণ একটি ব্যাকটেরিয়া, যার নাম নেইসেরিয়া গনোরিয়া। মূলত অনিরাপদ যৌন সম্পর্কের কারণে এ রোগটি ছড়িয়ে থাকে। আক্রান্ত হওয়ার পর নারী ও পুরুষের মধ্যে নানা ধরণের লক্ষ্মণ দেখা যায়। যথাযথ চিকিৎসা না নিলে এ থেকে আরও বন্ধ্যাত্ব সহ নানা রোগ হতে পারে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে সাধারণত একটি অ্যান্টিবায়োটিকে কাজ হয়। তবে এবারের ��ই ব্যক্তির ক্ষেত্রে সেটি হয়নি। এখন তাকে সর্বশেষ আরেকটি অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হচ্ছে। এটি সফল হয় কি-না সেটি আগামী মাস নাগাদ নিশ্চিত হতে পারবেন চিকিৎসকরা। তবে এ ধরনের সুপার গনোরিয়া ছড়িয়ে পড়ে কি-না তা নিয়ে এক ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে চিকিৎসকদের মধ্যে। যুক্তরাজ্যে এমন এক ব্যক্তির সন্ধান মিলেছে যিনি সবচেয়ে খারাপ ধরণের সুপার গনোরিয়ায় আক্রান্ত। +text: বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া মামলার অভিযোগ ছিল খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় তার স্বামীর নামে প্রতিষ্ঠিত এই দাতব্য প্রতিষ্ঠান থেকে দুই কোটি ৫৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। মামলা দায়েরের নয় বছর পর আজ (বৃহস্পতিবার) এর রায় দেওয়ার কথা। তবে রায় হলেও আরো চারটি দুর্নীতির মামলা লড়ে যেতে হবে খালেদা জিয়াকে। যে মামলাগুলোর তিনটিই দায়ের করা হয় ২০০৭ পরবর্তী তত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এই মামলাটি দায়ের করা হয় ২০০৯ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময়। মামলার মূল অভিযোগ- প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় মিসেস জিয়া তার ক্ষমতা অপব্যবহার করে এই ট্রাস্টের জন্য ৬ কোটি ১৯ লাখ টাকার তহবিল জোগাড় করেছিলেন। খালেদা জিয়ার একজন আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বিবিসিকে জানিয়েছেন এ মাসের ২৫ ও ২৬ তারিখে এই মামলার চূড়ান্ত সওয়াল জবাবের দিন ধার্য করা হয়েছে। তারপরই হয়তো বিচারক রায়ের দিন চূড়ান্ত করবেন। আদালতে হাজিরা দিয়ে ফিরছেন খালেদা জিয়া (ফাইল ফটো) নাইকো মামলা কানাডীয় প্রতিষ্ঠান নাইকোর সাথে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের চুক্তি করে রাষ্ট্রের প্রায় ১০,০০০ কোটি টাকা লোকসান করার এই মামলাটি হয় ২০০৮ সালে সেনা-সমর্থিত সরকারের সময়। মামলায় শেখ হাসিনাকেও আসামী করা হয়েছিল, কারণ এই চুক্তিটি প্রথম করা হয়েছিল ১৯৯৬ সালে যখন তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। পরে ২০০৯ সালে সরকার প্রতিষ্ঠা করার পর শেখ হাসিনা আদালতের মাধ্যমে এই মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়ে যান। তবে মামলাটি রয়ে যায় এবং আসামী হিসাবে থেকে যান খালেদা জিয়া। গ্যাটকো মামলা ঢাকার কমলাপুরে কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের কাজ যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে গ্যাটকো নামে একটি কোম্পানিকে দেওয়ার অভিযোগে এই মামলাটিও হয় ২০০৭ পরবর্তী সেনা-সমর্থিত সরকারের সময়। বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি মামলা খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে দায়ের করা এই মামলার অভিযোগ ছিল -চুক্তিবদ্ধ কোম্পানি শর্ত ভেঙ্গে সরকারের চোখের সামনে অতিরিক্ত এলাকায় কয়লা খনন করে রাষ্ট্রের ক্ষতি করেছে, এবং খালেদা জিয়া রাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন। নাইকো, গ্যাটকো এবং বড়পুকুরিয়া দুর্নীতি মামলায় পুলিশ এখনও চার্জশিট দেয়নি। বিএনপি সবসময় অভিযোগ করে, এই সব দুর্নীতি মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং হয়রানিমূলক। আইনজীবী মাসুদ তালুকদার বলেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০০৭-০৮ সালে তাদের বিরুদ্ধে করা এরকম শত শত মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করে নিলেও, বিএনপির করা আবেদনগুলো বিবেচনা করেনি। দুর্নীতির এই পাঁচটি মামলা ছাড়াও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আরো ৩১টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ১১টি মামলা নাশকতার। সেইসাথে রয়েছে মানহানি এবং রাষ্ট্রদ্রোহের বেশ কিছু মামলা। ১৫ই আগস্টে তার জন্মদিনটি ভুয়া - এই অভিযোগেও একটি মামলা রয়েছে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে। এক নজরে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্ট নামে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ আত্মসাতের যে মামলাটির রায় আজ (বৃহস্পতিবার) হওয়ার কথা, সেটি দায়ের হয়েছিল ২০০৮ সালে তৎকালীন সেনা-সমর্থিত সরকারের সময়। +text: ভারতে রমজানের মুবারক বার্তায় এখন দেখা যাচ্ছে রামাদান লেখার চল কবি নজরুল ইসলামের লেখা গান 'ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে' তো অমর হয়ে আছে। কিন্তু এখন রোজার মাসে আপনি যদি ভারতে কোনও সুপারমার্কেটে ঢুকতে যান, হয়তো আপনার চোখে পড়বে আপনাকে স্বাগত জানাবে 'রামাদান করিম' লেখা বিরাট ব্যানার বা পোস্টার। 'রামাদান' উপলক্ষে স্টোরে কী কী স্পেশাল অফার আছে, সেই লিফলেটও হয়তো হাতে গুঁজে দিয়ে যাবে কেউ! হোয়াটসঅ্যাপে বা ইমেলেও এর মধ্যেই অনেকের ফোনে চলে এসেছে 'রামাদান মুবারক' বার্তা। কিন্তু ভারতের মুসলিমরা চিরকাল যাকে রমজান বলে জেনে এসেছেন, হালে সেটাই কীভাবে ধীরে ধীরে রামাদানে পরিণত হল? "আসলে ভারতে ইসলামের মূল স্রোত যখন প্রথম আসে, তখন তা ছিল প্রবলভাবে পারস্য ভাবধারায় প্রভাবিত। আর ফার্সিতে যেহেতু শব্দটা রমজান - যেখানে জ-য়ের উচ্চারণটা Z-র মতো - তাই ভারতীয়রাও সেটাই বলতো। বাংলায় Z উচ্চারণটা নেই বলে বাঙালি মুসলিম তো পরিষ্কার রমজান উচ্চারণ করত," জানাচ্ছেন রাজনৈতিক ইসল���মের গবেষক ও ইতিহাসবিদ কিংশুক চ্যাটার্জি। "কিন্তু গত এক-দেড়শো বছর ধরেই ভারতীয় ইসলামে আরবিকরণের একটা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আরব দুনিয়ার সঙ্গে ভারতের যোগাযোগও হালে অনেক বেড়েছে। আরবিতে জ উচ্চারণটা নেই, তার জায়গায় ওরা বলে ধ আর Z-র মাঝামাঝি একটা কিছু - আর সেটা অনুসরণ করে ইদানীং ভারতেও রামাদান বলার চল শুরু হয়েছে", বলছেন মিঃ চ্যাটার্জি। অধ্যাপক চ্যাটার্জি বিবিসিকে আরও বলছিলেন, "আসলে এখন ইংরেজিতে লেখার সময় ফার্সির বদলে আরবি ট্রান্সলিটারেশনটাই বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে, সে কারণে Ramzan-র বদলে Ramadan লেখাটাই এখন বেশি চোখে পড়ছে।'' তবে ভারতীয় উপমহাদেশে যে মুসলিমরা উর্দুতে কথা বলেন, তাদের যে 'রামাদানে'র বদলে 'রমজান'ই বলা উচিত, তা নিয়ে কিছুকাল আগেই ক্যাম্পেন শুরু করেছিলেন পাকিস্তানি লেখক-অ্যাক্টিভিস্ট বীনা সারওয়ার। হার্ভার্ডের সাবেক ছাত্রী মিস সারওয়ারের যুক্তি ছিল, "উর্দুতে মূল শব্দটা রমজান। কিছুতেই রামাদান নয়। ঠিক যেভাবে আমাদের বলা উচিত খোদা হাফেজ, আল্লাহ হাফেজ নয়। এই ধরনের পাঁচমিশেলি শব্দ কিন্তু আরবিতেও নেই!" সে সময় তার এই প্রস্তাব নিয়ে তর্কবিতর্কও হয়েছিল বিস্তর। তবে বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, বীনা সারওয়ারের নিজের শহর করাচি-ই বলুন, অথবা ভারতের দিল্লি-হায়দ্রাবাদ - সর্বত্রই রমজানের বদলে ধীরে ধীরে আরও বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে রামাদান। রমজান না রামাদান এ নিয়ে ইসলামি চিন্তাবিদদের মধ্যে দ্বিমত আছে কিন্তু রমজান না কি রামাদান - মুসলিমদের জন্য কোনটা বলা বেশি শুদ্ধ? কিংবা বেশি ইসলামসম্মত? "দেখুন কোরানে তো রামাদান-ই বলা আছে, কাজেই ওটাই ঠিক মানতে হয়। ইসলামে শিক্ষিত লোকজন রামাদানই বলেন, যারা অতটা পড়াশুনো জানেন না তারা বলেন রমজান", বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন দেওবন্দে দারুল উলুম মাদ্রাসার প্রধান মাওলানা আবদুল খালিক। তবে সেই সঙ্গেই তিনি যোগ করেন, "পুঁথিগত উচ্চারণের বাইরেও অবশ্য সাধারণ মানুষের একটা নিজস্ব 'জবান' বা ভাষা মুখে মুখে তৈরি হয়ে যায়, তাতে যে ভাষার ব্যাকরণগত শুদ্ধতা সব সময় থাকে তা নয়। রমজান শব্দটাও সেভাবেই তৈরি হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস, কাজেই সেটাকেও হয়তো পুরোপুরি ভুল বলা যায় না।" তবে রমজান যেভাবে ধীরে ধীরে রামাদান হয়ে যাচ্ছে, সেটাকে 'ক্রমবর্ধমান আরবি প্রভাবের' চেয়ে বরং একটা 'শুদ্ধিকরণের প্রবণতা' হিসেবেই দেখছেন কলকাতা ব��শ্ববিদ্যালয়ের ইসলামি ইতিহাস ও সংস্কৃতির অধ্যাপক কাজী সুফিওর রহমান। ড: রহমান বিবিসিকে বলছিলেন, "আমি মনে করি এটা উচ্চারণগত ব্যাপার। দেখুন, বহির্বিশ্বের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ নিয়ত বাড়ছে, তাই অনেকেই মনে করছেন এই সুযোগে আমার বিদেশি শব্দের উচ্চারণটাও ঠিক করে নিলে ক্ষতি কী?" "আসলে আমাদের এটা বুঝতে হবে আরবি ভাষায় 'জ' শব্দটাই নেই - ওই জায়গায় তারা যেটা বলে সেটা অনেকটা ধ-এর কাছাকাছি। মিশরে একজন ফুটবলার আছে রামধান আলি নামে, সে যদি এখন কলকাতার মোহনবাগানে খেলত তাকেই আমরা ডাকতাম রমজান আলি বলে", হাসতে হাসতে তুলনা করছিলেন তিনি। হোয়াটসঅ্যাপে বা ইমেলেও ঘুরছে এধরনের 'রামাদান মুবারক' বার্তা। অধ্যাপক রহমান আরও বলছেন, "আর আমরা বাঙালিরা যে রমজান বলি সেখানেও জ-য়ের উচ্চারণ হওয়া উচিত Z-র মতো, যে কারণে অনেকে আবার রমযান লেখেন। তবে আমার মতে শুদ্ধ আরবিতে বলতে গেলে 'রামধান'-ই বলা উচিত, কারণ ওটাই সবচেয়ে কাছাকাছি উচ্চারণ। পাতি বাঙালিরা যেটাকে আজান বলেন, আরবিতে সেটাই কিন্তু 'আধান', মনে রাখবেন।" ইংরেজিতে Ramadan শব্দটা লেখা হলেও 'রামাদান' যে কখনওই শুদ্ধ নয়, সেটাও তিনি খেয়াল করিয়ে দিচ্ছেন। "কারণ আরবিতে আ-র কোনও বালাই নেই, যারা রামাদান লিখছে তারা ইংরেজি বানান অনুসরণ করে লিখছে, সেটা আবার আর এক গন্ডগোলের!" কাজেই রোজার মাসের সঠিক উচ্চারণ কী হওয়া উচিত তা নিয়ে গন্ডগোল বিস্তর! আপনি উর্দুতে, ফার্সিতে, না কি আরবিতে বলবেন - কোরানের ভাষায় বলবেন না কি আমজনতার জবানে - সেই সব সাতপাঁচ ভেবেচিন্তেই আসলে আপনাকে ঠিক করে নিতে হবে শব্দটা রমজান না কি রামাদান! রোজার মাসকে 'রমজান' বলে, বাঙালিরা তো বটেই - মোটামুটি গোটা ভারতীয় উপমহাদেশেই মুসলিমরা প্রায় আবহমানকাল থেকে সেটাই জেনে এসেছেন। +text: ইরানের তাব্রিজ শহরে জনশূন্য রাস্তা। প্রতি ঘন্টায় ইরানে গড়ে ১০ মিনিটে একজন করে মারা যাচ্ছে। ইউরোপ ইটালিতে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়েছে গেছে। শুক্রবার সেদেশে রেকর্ড ৬২৭ জন মারা গেছে। এ নিয়ে ইটালিতে মৃতের সংখ্যা ৪,০৩২। আক্রান্তের সংখ্যা ৪৭০২১ জন। ইটালির পাশের দেশে স্পেনে মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সেখানে মৃতের সংখ্যা ১৩২৬। রাজধানী মাদ্রিদের হাসপাতালগুলো নতুন নতুন রোগীর ভিড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পর্তুগালে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা ৬ থেকে দ্বিগুণ হয়ে ১২ হয়েছে। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ২৬০ জন। ব্রিটেনে এখন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪১৪৫। মৃত ১৭৮। আজ (শনিবার) থেকে দেশজুড়ে রেস্তোরা, বার, জিম, সিনেমা হল, থিয়েটার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মানুষকে পাগলের মতো জিনিসপত্র কেনা বন্ধ করতে আবাো আবেদন করেছে সরকার। সুইজারল্যান্ডে একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ শতাংশ বেড়ে ৬হাজার ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা ৫৬। নিজের সুরক্ষা নিয়ে শঙ্কিত ডাক্তার-নার্সরা, চীনের সাহায্য চাওয়া হবে কোয়ারেন্টিন না মানলে ঘরে তালাবন্ধ করে রাখার নির্দেশ প্রতিদিন নতুন নতুন রোগীর ভারে বিপর্যস্ত ইটালির হাসপাতালগুলো এশিয়া ইরানে প্রতি দশ মিনিটে একজন করে মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেদেশে ১২৩ জন মারা গেছে। ফলে মৃতের সংখ্যা প্রায় ১৬০০। আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ২১হাজার। সিঙ্গাপুর করোনাভাইরাস মোকবেলায় প্রশংসা কুড়ালেও শনিবার তারা দুজনের মারা যাওয়ার কথা জানিয়েছে। এটাই সেদেশে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা। চীনে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কেউ আক্রান্ত হয়নি কিন্তু শুক্রবারও ৪১ জন সেদেশে আক্রান্ত হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন একশ জন রোগীর কথা জানিয়েছে। প্রায় জনশূন্য নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ার। লোকজনকে ঘরের মধ্যে থাকার নির্দেশ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে যাওয়ার পর নতুন নতুন রাজ্য এবং শহরে মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতি পাঁচজন আমেরিকানের একজনকে - অর্থাৎ ৭ কোটি মানুষকে - এখন কার্যত গৃহবন্দী হয়ে থাকতে হবে। নিউইয়র্ক সিটিতে আক্রান্তের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৬২০০ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ১১হাজার ছাড়িয়ে গেছে, এবং এই সংখ্যা ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাড়ছে । বিপর্যস্ত জনপদের তালিকার শীর্ষে এখনও ইটালি, স্পেন ও ইরান। +text: রাহুল গান্ধী স্বাধীন ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসের একেবারে কেন্দ্রস্থলে অবস্থান এই নেহরু-গান্ধী রাজনৈতিক পরিবারের। রাহুল গান্ধীর প্রপিতামহ জওহরলাল নেহরু ছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। তার পিতামহী ইন্দিরা গান্ধী ভারতের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। আর পিতা রাজীব গান্ধী ছিলেন ভারতের তরুণতম প্রধানমন্ত্রী। এবারের নির্বাচনের আগে পর্যন্ত বলা যেতো, ২০১৪ সালে কংগ্রেসের ফলাফলই ছিল সবচাইতে খারাপ। সেবার কংগ্রেস মা��্র ৪৪টি আসনে জিতেছিল, আর এবার জিতেছে ৫২টি আসনে। কিন্তু এবার একটা বাড়তি আঘাত হলো, উত্তর প্রদেশের আমেথিতে রাহুল গান্ধী হেরে গিয়ে পার্লামেন্টে তার নিজের আসনটিও খুইয়েছেন। অবশ্য আগামী পার্লামেন্টে রাহুল গান্ধীকে বসতে দেখা যাবে - কারণ কেরালার একটি আসন থেকেও তিনি নির্বাচন করেছিলেন এবং তাতে তিনি জিতেছেন। কিন্তু আমেথি'তে রাহুলের পরাজয়ের গুরুত্ব-তাৎপর্য অনেক। বিবিসির গীতা পান্ডে লিখছেন, রাহুল গান্ধীর পারিবারিক পূর্বসুরীদের চিরকালের পাকা আসন এই আমেথি । সেখান থেকে তার পিতামহী ইন্দিরা, বাবা রাজীব ও মা সোনিয়া সবাই জিতেছিলেন, এমনকি রাহুল নিজেও গত ১৫ বছর ধরে ওই আসনে জিতে আসছিলেন । তাই আমেথিতে রাহুলের হেরে যাওয়া এক বিরাট অপমান। গান্ধী-নেহরু পরিবারের বংশলতিকা শুধু তাই নয়, রাহুল হেরেছেন বিজেপি'র স্মৃতি ইরানীর কাছে - যিনি অভিনেত্রী থেকে রাজনীতিবিদ হয়েছেন। মনে রাখা দরকার, এবারের নির্বাচনে কংগ্রেস জিতবে এমনটা খুব কম লোকই ভেবেছিলেন, কিন্তু তারা অন্তত এটুকু আশা করেছিলেন যে ২০১৪-র নির্বাচনের চাইতে এবার ভালো ফল করবে কংগ্রেস। সেটা হয় নি, এবং ঠিক এটাই পার্টির ভেতরে-বাইরে সবাইকে অবাক করেছে। রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব কি প্রশ্নের মুখে? রাহুল গান্ধী ফলাফলের পর বলেছেন, ভয় পাবার কিছু নেই, তাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং শেষপর্যন্ত তারা বিজয়ী হবেন। কিন্তু লখনৌ শহরে কংগ্রেসের অফিসে যে ক'জন কর্মী টিভির পর্দায় তাদের দলের পর্যুদস্ত হবার খবর দেখছিলেন, তাদের কাছে সে সম্ভাবনা এক মরীচিকা বলেই মনে হচ্ছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মী বলছিলেন, "আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতা খুবই কমে গেছে, আমাদের প্রতিশ্রুতি লোকে বিশ্বাস করছে না। অন্যদিকে মি. মোদী তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন কিন্তু লোকে তার কথা এখনো বিশ্বাস করছে।" তাকে জিজ্ঞেস করো হলো, কেন? জবাবে তিনি বললেন, "সেটা আমরাও বুঝতে পারছি না।" বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে পদত্যাগ করছেন মোদীর জয় বাংলাদেশের জন্য চিন্তার বিষয়: রওনক আম পাড়ার ক্যালেন্ডার নিয়ে মানুষ কতটা সচেতন? রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে কংগ্রেসের এমন ফলাফলের পর রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব নিয়ে নিশ্চয়ই প্রশ্ন উঠবে, উঠছেও। অনেক বিশ্লেষকই তার পদত্যাগ দাবি করছেন। সমস্যা হলো, আগের মতোই এ��ব দাবি আসছে পার্টির বাইরে থেকে। কংগ্রেসের নেতারা এসব দাবি কানে তুলবেন না, এটাই মনে হয়। দিল্লীর বাতাসে গুজব ভাসছে যে রাহুল গান্ধী নাকি পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস রাজনীতিবিদ মণিশংকর আইয়ার বলেছেন, এ পরাজয়ের কারণ নেতৃত্ব নয়। "কংগ্রেস তার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলবে না, মি. গান্ধী পদত্যাগ করতে চাইলেও তা মানবে না।" স্থানীয় অনেক নেতার কথায় রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বের চাইতেও দলের ভেতরের অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং নির্বাচনে প্রচার-কৌশলে ভুলভ্রান্তিই ছিল কংগ্রেসের আসল সমস্যা। ব্যক্তিত্বের লড়াইয়ে হেরে গেছেন রাহুল কংগ্রেসের বিশ্লেষকরা আড়ালে ঠিকই স্বীকার করেন যে নরেন্দ্র মোদীর জনসম্মোহনী ব্যক্তিত্বের সাথে লড়াইয়ে রাহুল বরাবরই পিছিয়ে পড়ছেন। তাদের মতে কংগ্রেসের সামনে এক বিরাট বাধা হলো 'ব্র্যান্ড মোদী'। ব্যক্তিত্বে লড়াইয়ে হেরে যাচ্ছেন রাহুল, বলছেন অনেকে তারা বলেন, নরেন্দ্র মোদী তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন কিন্তু তার কথা এখনো লোকের মনে আস্থা সৃষ্টি করতে পারে। আর রাহুল গান্ধীর সমালোচনা হচ্ছে যে তার কোন আকর্ষণী শক্তি নেই, লোকজনের সাথে তিনি সম্পর্ক তৈরি করতে পারেন না, তিনি দিকভ্রান্ত এবং প্রায়ই নানা রকম রাজনৈতিক ভুল করে বসেন। মি. মোদী নিজেই অনেকবার বলেেছন যে রাহুল গান্ধী এ অবস্থানে এসেছেন নিজের যোগ্যতায় নয়, বরং পারিবারিক যোগাযোগের কারণে। কংগ্রেসের সদস্যরাও জনান্তিকে বলেন, রাহুল একজন সহজ-সরল মানুষ, প্রতিপক্ষের যে কৌশলী ধূর্ততা - তা তার নেই। গান্ধী পরিবারের বংশানুক্রমিক ঐতিহ্য এখন সুদূর অতীতের বিষয় নেহরু-গান্ধী পরিবার থেকে ভারতের তিন জন প্রধানমন্ত্রী এসেছেন ঠিকই - কিন্তু সে পরিবারের ঐতিহ্য এখন কিছুটা ম্লান হয়ে গেছে। এ যুগের ভারতের উচ্চাভিলাষী তরুণদের কাছে জওহরলাল নেহরু ও ইন্দিরা গান্ধী আর প্রাসঙ্গিক নন, তাদের অবদান অনেক দূর অতীতের ইতিহাস মাত্র। নির্বাচনী লড়াইয়ে যোগ দিয়েছিলেন প্রিয়াংকা গান্ধীও একালের প্রজন্মের কাছে বরং কংগ্রেসের ২০০৪-২০১৪ শাসনকালের বিতর্ক-দুর্নীতিই প্রধান। এটা স্পষ্ট যে এই প্রজন্মের কাছে রাহুল গান্ধী তার 'ভিশন' বিক্রি করতে ব্যর্থ হয়েছেন। কংগ্রেসের নেতারা তাদের এই বিপর্যয়ের জন্য রাহুল গান্ধীকে দোষ দিতে চান না। তবে একজন বলেছেন, রাহুল গান্ধীর একজন 'অমিত শাহ' দরকার - যিনি তার জন্য নির্বাচনী বিজয়ের একটা কৌশল তৈরি করতে পারবেন। যেমনটা বিজেপির প্রেসিডেন্ট নরেন্দ্র মোদীর জন্য করেছেন। আসলে, সাম্প্রতিক কালে রাহুল গান্ধীর ইমেজ আগের চাইতে খানিকটা উন্নত হচ্ছিল বলেই বলা যায়। ফেব্রুয়ারি মাসে যখন তার বোন প্রিয়াংকা গান্ধী উত্তর প্রদেশের প্রচারণায় যোগ দেন - তখন অনেকে মনে করেছিলেন হয়তো এই দুই গান্ধী কিছু ঘটিয়ে ফেলতেও পারেন। অনেক দিন ধরেই কিছু কংগ্রেস সমর্থক বিশ্বাস করতেন যে রাহুল নয়, বরং প্রিয়াংকাই হচ্ছেন সেই 'গান্ধী' - যিনি এ পরিবারের বংশানুক্রমিক রাজনীতিকে রক্ষা করতে পারেন। কিন্তু প্রিয়াংকা গান্ধী সে দায়িত্ব নিতে ইচ্ছুক ছিলেন না। মনে করা হয় রাহুল ও প্রিয়াংকার সম্পর্কও ঘনিষ্ঠ। তাই এখন ভাইকে হটিয়ে দেবার কোন পরিকল্পনায় বোন অংশ নেবেন এমন সম্ভাবনা কম. তবে প্রিয়াংকা হয়তো আগামীতে একটা বৃহত্তর ভুমিকা নিতে পারেন। আমেথির আসনে রাহুল গান্ধীকে হারিয়েছেন স্মৃতি ইরানী কংগ্রেস কি আবার উঠে দাঁড়াতে পারবে? শেষ পর্যন্ত এটাই বলা হচ্ছে যে, কংগ্রেস পার্টির ভারতকে যেমন করে গড়তে চায় - 'সেই ভিশন' ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু মি. মোদী যেভাবে ভারতের রাজনৈতিক হৃৎস্পন্দন ধরতে পেরেছেন এবং তা প্রভাবিত করেছেন - কংগ্রেস সেখানে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের আত্মানুসন্ধান করতে হবে, কেন এটা ঘটলো তা বের করতে হবে, বলছেন দলটির নেতারা। তারা আরো বলছেন, নির্বাচনের ফল যতই খারাপ হোক, রাহুল গান্ধীর পাশে তারা থাকবেন। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, শুধু রাহুল নয় আরো অনেক নেতাই তো হেরে গেছেন। সব নির্বাচনেই এটা হয়, অনেকে জেতেন, অনেকে হারেন। এরা আরো মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ১৯৮৪ সালে এই বিজেপিই মাত্র দু'টি আসন পেয়েছিল। "তারা সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে এখানে আসতে পারে, তাহলে আমরাও পারবো।" আরো পড়তে পারেন: পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি'র উত্থানের তাৎপর্য কী? ভারতের নির্বাচন: নরেন্দ্র মোদীর বিজয় কী বার্তা দিচ্ছে আবার মোদী সরকার: কী প্রত্যাশা হবে বাংলাদেশের? ভারতের নির্বাচনে বিপুল বিজয় পেয়েছে নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি। অন্যদিকে বিরোধীদল কংগ্রেস এবং তার নেতা রাহুল গান্ধী - ভারতের প্রভাবশালী নেহরু-গান্ধী পরিবারের উত্তরাধিকারী - এখন পরাজিত, বিধ্বস্ত। +text: বুয়েট ছাত্রাবাসে ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে দানা বাঁধছে বিক্ষোভ শুধু সিএসই বিভা��ের ওয়েবপেজ ব্লক করার কথা বলা হলেও, বুয়েটের ওয়েব সাইটেই সকাল থেকে প্রবেশ করা যায়নি। বিটিআরসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জহুরুল হক বলেছেন, নিরাপত্তার জন্য যতদিন প্রয়োজন ততদিন ব্লক থাকবে ওয়েবসাইটটি। তবে কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থী এবং বিশ্লেষকদের অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, কর্তৃপক্ষ নির্যাতনের অভিযোগ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে কি না। ওয়েবসাইটে যা ছিল বুয়েটের সিএসই বিভাগের একটি গবেষণা প্রকল্পের অংশ হিসেবে ২০১৬ সালের শেষে ওয়ান-স্টপ অনলাইন রিপোর্টিং সিস্টেম সংক্ষেপে 'ইউ রিপোর্টার' নামে একটি সার্ভার গড়ে তোলে বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এতে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা নিজের পরিচয় গোপন রেখে অভিযোগ জানাতে পারেন। আবরার হত্যার প্রতিবাদে এই গ্রাফিতি এঁকেছে বুয়েটের বিক্ষোভকারীরা সিএসই বিভাগের অধ্যাপক মোস্তফা আকবর জানিয়েছেন, বিভিন্ন সময় আবাসিক হলে শিক্ষার্থীরা যে ধরণের হেনস্থা ও নিপীড়নের শিকার হয়, সে সম্পর্কে নিজের পরিচয় প্রকাশ না করে, একজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে প্রতিকার পেতে পারবে, এমন ধারণা থেকে ঐ সার্ভার গড়ে তোলা হয়। বুধবার পর্যন্ত সেখানে ১০৬টি অভিযোগ এসেছে, যার অনেকগুলোই জমা পড়েছে আবরার ফাহাদ নিহত হবার পর। ওয়েবসাইট ব্লক করার যে কারণ দেখাচ্ছে বিটিআরসি বিটিআরসি বুধবার বাংলাদেশের ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে অপারেটর এবং ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বরাবর চিঠি লিখে ঐ ওয়েবপেজ ব্লক করার নির্দেশ দেয়। বিটিআরসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জহুরুল হক জানিয়েছেন, 'নিরাপত্তা'র কারণে ওয়েবপেজটি বন্ধ করা হয়েছে। তিনি বলেন, নিরাপত্তার কারণে যতদিন প্রয়োজন, ততদিন বন্ধ থাকবে ওয়েবপেজটি। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেমে গেলে নিষেধাজ্ঞা উঠে যেতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি। এদিকে, বুয়েটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মনে করেন, তাদের ওপর ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো যাতে আর প্রকাশ না পায়, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ সে উদ্দেশ্যে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বুয়েটে ছাত্র নির্যাতনের প্রতিবাদ চলছে নাম ও বিভাগ প্রকাশ করতে চান না আন্দোলনরত এমন একজন ছাত্রী বলছিলেন, "ওয়েবপেজটিতে আমরা আমাদের ওপর ঘটে যাওয়া নির্যাতনের বিষয়গুলো শেয়ার করতে পারতাম। এখন সেটা বন্ধ করে দেয়া মানে আমাদের মত প্রকাশে বাধা দেয়া।" "এখানে বাধা আসার কিছু ছিল না, এখানে অনৈতিক কিছু হচ্ছে না। অথবা আমরা এমন কিছুও করিনি যা ক্ষোভ জন্ম দিতে পারে। যে কারণে কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে আমরা ক্ষুব্ধ ও বিস্মিত।" ইমা নামের আরেকজন ছাত্রী, যিনি নিজের এই নামটিই শুধু জানিয়েছেন বিবিসিকে, তিনি বলছিলেন, "এটা ছিল সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটা প্ল্যাটফর্ম, যারা খুনিদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। কারো কাছ থেকেই সেই প্ল্যাটফর্ম কেড়ে নেয়া ঠিক কাজ হয়নি। আমরা চাইনা আমাদের ওপর অত্যাচার চলুক।" শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ নির্যাতনের অভিযোগ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন। অভিযোগ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা? ২০১৬ সালের শেষ দিকে প্রতিষ্ঠা হবার পর নয়ই অক্টোবর পর্যন্ত সিএসই বিভাগের ওই সার্ভারে ১০৬টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এসব অভিযোগের প্রায় সবগুলোই নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতার বর্ণনা। নির্যাতনের যেসব অভিযোগ এসেছে, তার মধ্যে অনেকগুলোই ফৌজদারি অপরাধের মধ্যে পড়ে। অভিযোগ ধরে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার বদলে কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট ব্লক করার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে অভিযোগের জায়গা বন্ধ করে দেয়ার সমালোচনা করেছেন অনেকে। মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল বলছেন, "বিচার ব্যবস্থার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক স্তম্ভ হচ্ছে অভিযোগ দিতে পারা। এটিকে বিচারের 'অভিজ্ঞমতা' বলে। বুয়েটের ওয়েবসাইটটি বন্ধ করার মাধ্যমে বিচারের সেই অভিজ্ঞমতা বন্ধ করে দিল কর্তৃপক্ষ।" আরো পড়ুন: 'যত ভয় দেখানো হচ্ছে, আমরা তত ভয় পাচ্ছি' আবরার হত্যায় শাস্তি হবে, আন্দোলন কেন? - হাসিনা রাজনীতি বন্ধের সময় বেঁধে দিল বুয়েট ছাত্ররা "সেটি যখন কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করে বন্ধ করে দিয়েছে, এখন আমরা যদি বলি যে নির্যাতনের অভিযোগ যাতে না আসে বা অভিযোগ ধামাচাপা দেয়া যায়, সে উদ্দেশ্যে করা হয়েছে, তাহলে ভুল হবে না। একইসঙ্গে যাতে অভিযোগগুলোর ব্যপারে ব্যবস্থা নিতে না হয়, বিচার না করতে হয়, হয়ত সেজন্যই ওয়েবসাইট ব্লক করা হয়েছে।" অভিযোগের ব্যপারে কী ব্যবস্থা নিয়েছে বুয়েট? সিএসই বিভাগের অধ্যাপক মোস্তফা আকবর বলেছেন, আবরার ফাহাদ নিহত হবার আগ পর্যন্ত প্রাপ্ত অভিযোগগুলো সম্পর্কে বুয়েটের উপাচার্য, রেজিস্টার এবং ছাত্র কল্যাণ পরিচালককে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। "সে প্রেক্ষাপটে কর্তৃপক্ষ হল প্রশাসনকে সতর্ক করেছেন বলে শুনেছি। তবে কোন ব্যবস্থার কথা শুনিনি।" তবে, অধ্যাপক আকবর জানিয়েছেন, বিটিআরসি ব্লক না করলেও সিএসই বিভাগ নিজেই ঐ সার্ভার বন্ধের কথা ভাবছে। "যে গবেষণা প্রকল্পের আওতায় ঐ সার্ভার তৈরি করা হয়েছিল, সেজন্য 'যথেষ্ট' কেসস্টাডি পাওয়া গেছে, এখন সংশ্লিষ্ট শিক্ষক সার্ভারটি বন্ধ করে দিতে চান।" সার্ভার বন্ধে সরকারি বা কর্তৃপক্ষের কোন নির্দেশনা রয়েছে কিনা সে প্রশ্নের কোন জবাব তিনি দেননি। 'নিরাপত্তা'র কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বা সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীদের চালু করা ওয়েবপেজটি ব্লক করে দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বিটিআরসি। +text: আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের। ঢাকায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, আজ মন্ত্রীসভার বৈঠকের পর এই বিষয়ে আলাপ আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যে সংলাপে বসতে চায়, তাতে আওয়ামী লীগ সম্মতি দিয়েছে। এর আগে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির পক্ষ থেকে বারবার সংলাপে বসার আহবান জানানো হলেও সরকারি দল আওয়ামী লীগ সবসময় সেটা প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু এখন নবগঠিত রাজনৈতিক জোটের আহবানে সাড়া দিল আওয়ামী লীগ। এই জোটের অন্যতম সদস্য বিএনপিও। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, "শেখ হাসিনার দরজা কারো জন্য বন্ধ থাকে না। এর মাধ্যমে আপনারা বুঝতে পেরেছেন, আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছেন। এবং এ ব্যাপারে আমরা আমাদের নেত্রীর সঙ্গে একমত।" তবে কবে বৈঠক হবে সেটা পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। রবিবার সংলাপের আহবান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী এবং সাধারণ সম্পাদক বরাবর দুটি চিঠি পাঠায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। যার সঙ্গে তাদের সাত দফা প্রস্তাব এবং এগারোটি লক্ষ্যও সংযুক্ত করা হয়। ড. কামাল হোসেন। আরো পড়তে পারেন: সরকারবিরোধী আন্দোলনের যে ছক কষেছে ঐক্যফ্রন্ট কামাল হোসেনের নেতৃত্ব: কী বলছে তৃণমূল বিএনপি? ঐক্যফ্রন্টের বিরুদ্ধে কেন আক্রমণাত্মক আওয়ামী লীগ? এই সাত দফার দাবির মধ্যে রয়েছে বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলী���় সরকারের অধীনে নির্বাচনের আয়োজন করা। বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিও আছে ওই সাত দফায়। এর আগে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সবকটি দাবীই নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। দলটির বক্তব্য: এসব দাবি সংবিধানসম্মত নয়। সংলাপের আহবান জানিয়ে ঐক্যফ্রন্টের দেওয়া চিঠিতে ড. হোসেন লিখেছিলেন, "শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সকলের অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাথে একটি অর্থবহ সংলাপের তাগিদ অনুভব করছে এবং সে লক্ষ্যে আপনার কার্যকর উদ্যোগ প্রত্যাশা করছি।" বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য নির্দিষ্ট কাউকে দায়ী না করে তিনি তার চিঠিতে লিখেছেন, "নেতিবাচক রুগ্ন রাজনীতি কিভাবে আমাদের জাতিকে বিভক্ত ও মহাসঙ্কটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে, তাও আমাদের অজানা নয়।" আরো পড়তে পারেন: ইন্দোনেশিয়ায় ১৮৯ জন যাত্রী নিয়ে বিমান বিধ্বস্ত বিধ্বস্ত বিমানের পাইলট ছিলেন ভারতীয় জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদার ৭ বছর জেল বাংলাদেশে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে নবগঠিত ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সংলাপে বসবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। +text: বেলজিয়ামের প্রিন্সের ভাতা কমিয়ে দিয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট সরকারের অনুমতি না নিয়ে প্রিন্স লরেন্ট সামরিক পোশাকে চীনা দূতাবাসের এক সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন গত বছর। সেই ছবি তিনি নিজে টুইট করেছিলেন। এই অনুষ্ঠানটি ছিল চীনা সেনাবাহিনীর ৯০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে।সরকারের অনুমতি ছাড়া এধরণের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে কূটনৈতিক সম্পর্কে না জড়ানোর জন্য প্রিন্সকে সতর্ক করেছিলেন বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী। এরপরও সেই অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ায় প্রিন্সের ভাতা কমানোর প্রস্তাব পার্লমেন্টে উত্থাপনের পিছনে ছিলেন বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল।আইনপ্রণেতারা ১৫ শতাংশ ভাতা কমানোর প্রস্তাব পাস করেন। এই জরিমানার ফলে প্রিন্স লরেন্টের বার্ষিক ভাতা ৩ লাখ ৭৮ হাজার ডলার থেকে কমে ২ লাখ ৭০ হাজার ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে। ৫৪ বছর বয়স্ক প্রিন্স লরেন্ট বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপের ছোট ভাই এর বিরুদ্ধে কিভাবে যুক্তি দিয়েছিলেন প্রিন্স লরেন্ট? প্রিন্স লরেন্ট বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপের ছোট ভাই। তিনি পার্লামেন্টকে একটি চিঠি লিখেছিলেন সেখানে ভাতা কমানোর সিদ্ধান্ত হওয়ার আগে। তিন পৃষ্ঠার সেই চিঠিতে তিনি তাঁর আবেগকে তুলে ধরেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, "একটা ছোট ঘটনা নিয়ে ভোটে আইনপ্রণেতারা আমার বিপক্ষে অবস্থান নিলে, সেটা আমার জীবনের জন্য বড় আঘাত হবে।" রাজপরিবারের সদস্য হওয়ায় তিনি তাঁর জীবনের সীমাবদ্ধতার বিষয়গুলোকেও আবেগ জড়িয়ে তুলে ধরেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, রাজপরিবারের সদস্য হওয়ায় জীবিকা নির্বাহে তিনি কোন চাকরিও করতে পারেন না। এটা তাঁর স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টাকে বাধা দিয়েছে। একেবারে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়েও তিনি চিঠিতে লিখেছিলেন যে, বিয়ে করার জন্য তাঁকে অনুমতি নিতে হয়।নিজের পছন্দের নারীকে বিয়ে করার জন্য এখনও তাঁকে মাশুল দিতে হচ্ছে। কিন্তু আবেগে ভরা এই চিঠিকে আমলে নেয়নি বেলজিয়ামের পার্লামেন্ট। প্রিন্স লরেন্ট কী এই প্রথম বিতর্কে জড়িয়েছিলেন? আসলে তিনি এরআগেও বিতর্কে জড়িয়েছেন।বেলজিয়ামে তিনি প্রিন্স মাউডিট নামে পরিচিত। গাদ্দাফি বেঁচে থাকতে লিবিয়ায় এক বৈঠকে যোগ দিয়ে প্রিন্স লরেন্ট সমালোচিত হয়েছিলেন। ২০১১ সালে তিনি সরকারে অনুমতি ছাড়া বেলজিয়ামের সাবেক উপনিবেশ কঙ্গোতে গিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছিলেন। চীনের এক অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য বেলজিয়ামের প্রিন্স লরেন্টের মাসিক ভাতা ১৫ শতাংশ কমিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট। আগামী এক বছর তাঁকে কম ভাতা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে।কারণ বেলজিয়ামের পার্লামেন্ট প্রিন্সের আবেগঘন চিঠিকেও আমলে নেয়নি। +text: নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের একটি ধারা সংশোধন করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। সেই মামলায় তার স্বামীর তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তবে রায় ও জরিমানার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে একটি মামলা করেন সেই স্বামী। কিন্তু এর মধ্যে তাদের মধ্যে মিল হয়ে যায়। যখন আদালতে মামলা চলছে, তখন এই যুগল একসঙ্গে ঘর-সংসারও করছেন। কিছুদিন আগে তাদের একটি সন্তানও হয়েছে। বুধবার আড়াই মাসের সন্তানকে নিয়ে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো: মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে হাজির হয়েছিলেন এই দম্পতি। রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ওনাদের সংসার চলছে, কিছুদিন আগে একটি বাচ্চাও হয়েছে। "সেই আড়াই মাসের বাচ্চা নিয়ে আজকে এই ভদ্রমহিলা আদালতে এসেছেন।" আরো পড়ুন: বাংলাদেশে নারী নির্যাতনের মিথ্যা মামলা কতটা হয়? পঁচিশতম স্ত্রীর করা মামলায় স্বামী গ্রেফতার? 'পুরুষ অধিকার' রক্ষায় আন্দোলনে নেমেছেন যারা "আদালত দেখলেন যে, মামলাও চলছে আবার তারা সংসারও করছেন, দুজনের জন্যই এটা বিব্রতকর অবস্থা।" তিনি জানান, আড়াই মাসের একটি শিশুকে নিয়ে তাদের আদালতে আসতে হচ্ছে দেখে আদালত "খানিকটা আবেগপ্রবণ" হয়ে পড়ে। "আদালত বলেছেন এটা আমাদের জন্য যেমন বিব্রতকর অবস্থা, তেমনি এই দম্পতির জন্যও বিব্রতকর অবস্থা,'' বলছেন মি. মোর্শেদ। ''এ কারণে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে ওই সাজার রায়টি বাতিল করে দিয়েছেন।" সেই সঙ্গে আইন মন্ত্রণালয় এবং মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে যে, এই আইনের ১১ (গ) ধারাটিকে সংশোধন করে আপোষযোগ্য করার জন্য, জানান তিনি। কী বলা আছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ (গ) ধারায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ (গ) ধারা অনুযায়ী, যদি কোন নারীর স্বামী অথবা স্বামীর পিতা, মাতা, অভিভাবক, আত্মীয় বা স্বামীর পক্ষের কোন ব্যক্তি যৌতুকের জন্য উক্ত নারীর সাধারণ জখম করেন, তাহলে দায়ী ব্যক্তি অনধিক তিন বছর কিন্তু অন্যূন এক বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং উক্ত দণ্ডের অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হবেন। এই ধারাটি জামিন অযোগ্য। তবে আগামী ছয়মাসের মধ্যে একে সংশোধন করে 'আপোষযোগ্য' করার জন্যই হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছে বলে জানাচ্ছেন মি. মোর্শেদ। সংশোধন শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের ট্রাইব্যুনালগুলোকে এই ধারাটি 'আপোষযোগ্য' বলে বিবেচনা করার আদেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে স্বামী-স্ত্রী চাইলে এই মামলায় আপোষ করতে পারেন। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: সোনাগাজীর ওসি প্রত্যাহার, 'শম্পাকে' পায়নি পুলিশ রাসেল সরকারকে পাঁচ লাখ টাকা দিল গ্রিন লাইন জামায়াত কি সংস্কারের পথ থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে? গভীর রাতে হাইকোর্ট মাজারের সিন্দুক ভাঙলো কে? সাবেক বিচারপতিও বিচারের আওতামুক্ত নন- হাইকোর্ট সাত বছর আগে স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেছিলেন বাংলাদেশের বন্দর নগরী চট্টগ্রামের একজন নারী। +text: ভারতীয় ক্রিকেটার ইয়ুজভেন্দ্রা চাহাল, সানগ্লাস পরিহিত খেলায় এরকম ঘটনা খুব কমই থাকে য���তে দু'পক্ষের দর্শকরা উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন। কিন্তু চলতি এশিয়া কাপে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ম্যাচ চলাকালে এরকম একটি ঘটনা ঘটেছে যাতে দুটো দেশের ভক্তরা একসাথে হাততালি দিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেটার ইয়ুজভেন্দ্রা চাহালকে উদ্দেশ্য করে। এর কারণ- ম্যাচ চলাকালে তিনি পাকিস্তানি ক্রিকেটার উসমান খানের জুতার ফিতা বেঁধে দিয়েছিলেন। দুটো দেশের ভক্তরাই সাধারণ এই ঘটনাটিকে উল্লেখ করছেন 'সুন্দর' একটি মুহূর্ত হিসেবে। ঢাকায় মিরপুর ক্রিকেট স্টেডিয়ামেও এরকম একটি ঘটনা বেশ আলোচিত হয়েছিল যখন ইংলিশ ক্রিকেটার অ্যালিস্টার কুক হাঁটু গেড়ে বাংলাদেশী ক্রিকেটার মেহেদী হাসান মিরাজের পায়ের জুতার ফিতা বেঁধে দিয়েছিলেন। খেলার মাঠের উত্তেজনার ভেতরে ঘটে যাওয়া এরকম আরো কিছু ঘটনার দিকে ফিরে তাকানো যাক: উপরের ছবিতে দেখা যাচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেটার চাহাল মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে পাকিস্তানি ক্রিকেটার উসমান খানের জুতার ফিতা বেঁধে দিচ্ছেন। অনেকেই এই ছবিটি শেয়ার করেছেন টুইটারের মতো সোশাল মিডিয়ায়। পাওলি ডি ক্যানিও ও পল জেরার্ড পাওলো ডি ক্যানিও পুরষ্কার নিচ্ছেন পল জেরার্ডের হাত থেকে। খেলার মাঠে যে কোন ফুটবলার তো বটেই, সমর্থকদেরও স্বপ্ন থাকে এরকম যে তিনি পায়ের কাছে বল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন এবং তার সামনে খোলা নেট। অর্থাৎ ফাঁকা পোস্ট। কিন্তু পাওলো ডি ক্যানিও এরকমই এক স্বপ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন ২০০১ সালে। তিনি খেলছিলেন ইংলিশ ফুটবল ক্লাব ওয়েস্ট হ্যামের হয়ে। আর ম্যাচটি ছিল আরেক ইংলিশ ক্লাব এভারটনের সাথে। একসময় দেখা গেল এভারটনের গোলরক্ষক পল জেরার্ড আহত হয়ে পেনাল্টি এলাকায় মাটিতে পড়ে আছেন। ফলে পাওলো ডি ক্যানিওর সামনে তখন একেবারে ফাঁকা পোস্ট। ডি ক্যানিও তখন খুব সহজেই বলটি নেটে পাঠিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু তার পরিবর্তে তিনি শট না নিয়ে হাত দিয়ে বলটি তুলে নিলেন। তার এই 'অসাধারণ খেলোয়াড়সুলভ আচরণের' কারণে তাকে পরে 'ফিফা ফেয়ার প্লেয়ার' পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছিল। রাফায়েল ন্যাদাল ও রজার ফেডার রাফায়েল ন্যাদাল জড়িয়ে ধরেছেন রজার ফেডারকে। টেনিসে এই দু'জনই শীর্ষ খেলোয়াড়। ফেডার ও ন্যাদাল। তারা বহুবার মুখোমুখি হয়েছে একে অপরের। ২০০৯ সালের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে রজার ফেডার যখন তার প্রতিদ্বন্দ্বীর ন্যাদালের কাছে পাঁচ সেটে পরাজিত হলেন ��খন তিনি তার কান্না চেপে রাখতে পারছিলেন না। তখন এগিয়ে এলেন রাফায়েল ন্যাদাল নিজে। রজার ফেডারের কাঁধের উপর হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলেন তাকে। জয়ী হয়েও তিনি পরাজিত প্রতিদ্বন্দ্বীকে এভাবেই সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলেন। ১০ হাজার মিটার দৌড় শেষে... লিনিও চাকা দৌড়ে আসছেন ফিনিশিং লাইনের দিকে। স্বর্ণপদক জয় করাই হয়তো প্রথম লক্ষ্য থাকে একজন দৌড়বিদের। কিন্তু কখনও কখনও এটাই সবকিছু নয়। অস্ট্রেলিয়ান কমনওয়েলথ গেমসে ১০ হাজার মিটার দৌড়ের এক ইভেন্টে অনেক আগেই দৌড় শেষ করে ফেলেন অস্ট্রেলিয়ার এলোজ ওয়েলিংস, মেডেলিন হিলস এবং সেলিয়া সালোহেন। কিন্তু তারা অন্য একটি কারণে ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। এই তিনজনই সিদ্ধান্ত নিলেন একেবারে শেষ দৌড়বিদ ফিনিশিং লাইন পার না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে অপেক্ষা করবেন। এই শেষ দৌড়বিদ ছিলেন লেসোথোর লিনিও চাকা। ফিনিশিং লাইন অতিক্রম করার সাথে সাথে অপেক্ষমাণ তিন অস্ট্রেলীয় দৌড়বিদ তাকে জড়িয়ে ধরলেন। এন্ড্রু ফ্লিনটফ ও ব্রেট লী ব্রেট লীকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন এন্ড্রু ফ্লিনটফ। আরো পড়তে পারেন: বাংলাদেশে ক্যান্সার চিকিৎসার ব্যয় নিয়ে দিশেহারা রোগীরা ‘হোমোফোবিয়া’ কি সারিয়ে তোলা সম্ভব? ওয়াশিংটন আগুন নিয়ে খেলছে: রাশিয়া ইংল্যান্ডের জন্যে এটা ছিল এক আনন্দের দিন যেদিন তারা ২০০৫ সালের অ্যাসেজ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে পরাজিত করলো। কিন্তু আনন্দ উল্লাস করার পরিবর্তে ইংল্যান্ডের এন্ড্রু ফ্লিনটফ তখন অস্ট্রেলিয়ার ব্রেট লীকে সান্ত্বনা দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। এই ঘটনার বহু পরে ২০১০ সালে ব্রেট লীর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল সেদিন ফ্লিনটফ আসলে তাকে কী বলেছিলেন। লী তখন ওই মুহূর্তের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেছিলেন, "তিনি বলেছিলেন, বন্ধু এটা তোমাদের দুর্ভাগ্য। আমরা তোমাকে আউট করার জন্যে অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমরা ভাবিনি যে শেষ দুই কি তিন রানে এরকম কিছু হবে। পরে ভেতরে তোমার সাথে বিয়ার খাওয়ার সময় দেখা হবে।" গ্যারেথ সাউথগ্যাটের সান্ত্বনা কলাম্বিয়ার ফুটবলারকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন গ্যারেথ সাউথগেট। পেনাল্টি শুট-আউটে যে ইংলিশ ফুটবলাররা ভালো নয় সেটা মোটামুটি সবারই জানা। ফলে ইংল্যান্ডের ম্যানেজারের এটা আশা করা খুব স্বাভাবিক যে তার দল পেনাল্টি শুট-আউটে জিতে ২০১৮ সালে র��শিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠবে। কিন্তু সেদিন ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ কলাম্বিয়ার একজন ফুটবলার যখন পেনাল্টি মিস করলেন তখন তাকে সান্ত্বনা দিতে এগিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কারণ তিনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছিলেন যে এরকম পরিস্থিতিতে ওই ফুটবলারের কেমন লাগতে পারে! জার্মানি ও ইংল্যান্ডের মধ্যে ১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত ইউরো টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে বিদায় নিতে হয়েছিল পেনাল্টি শুট-আউটে হেরে গিয়ে। সেদিন এই গ্যারেথ সাউথগেটেরই শট আটকে দিয়েছিলেন জার্মান গোলরক্ষক। আর জার্মানি পৌঁছে গিয়েছিল ফাইনালে। সাউথগেট সেদিনের কথা নিশ্চয়ই ভুলতে পারেন নি! চিরবৈরী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রিকেট ম্যাচের উত্তেজনা নতুন কিছু নয়। কিন্তু এই ম্যাচের কিছু কিছু মুহূর্ত থাকে যা ক্রিকেট-প্রেমীদের স্মৃতিতে বহুকাল স্মরণীয় হয়ে থাকে। +text: ডোনাল্ড ট্রাম্প এর মধ্যে কিছু এসেছে বড় বড় রাজনৈতিক নেতার মুখ থেকে। হাসপাতালের ফেস মাস্ক চুরি থেকে শুরু করে করোনাভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসা এবং জীবাণু যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে এই ভাইরাস ব্যবহারের কথা – সব রকম দাবিই শোনা গেছে রাজনীতিবিদদের মুখে। এখানে দেখে নিন এরকমই কিছু দাবির কথা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তিনি শুরুতে করোনাভাইরাসকে তেমন পাত্তা দিতে চান নি, তবে পরে বলেন এটা বিশ্বব্যাপি মহামারিতে পরিণত হয়েছে। যখন ফেসমাস্কের চাহিদা বেড়ে গেল, তখন মি. ট্রাম্প দাবি করেছিলেন নিউ ইয়র্কের হাসপাতাল থেকে বিপুল সংখ্যক সার্জিক্যাল মাস্ক চুরি হয়ে যাচ্ছে। টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? করোনাভাইরাস নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় তিনি প্রশ্ন করেন এত মাস্ক কোথায় যাচ্ছে? এগুলো কি পেছনের দরজা দিয়ে অদৃশ্য হযে যাচ্ছে? কিন্তু এরকম বিপুল সংখ্যায় মাস্ক চুরির কোন প্রমাণ পাওয়া যায় নি। করোনাভাইরাসের উৎপত্তি যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কিছু চীনা কর্মকর্তা এটা বার বার বলার চেষ্টা করেছেন যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সূচনা চীনে হয়নি। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজান বার বার এ কাজ করেছেন। চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়াও বার বার এসব মিথ্যা দাবি তুলে ধরার চেষ্টা করেছে যে কোভিড ১৯ হয়তো সৃষ্টি করেছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। মাত্তিও সালভিনি আরেকটা দাবি ছিল যে চীনের অনেক আগেই ইতালিতে এ ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছিল। কিন্তু এরকম দাবির সত্যতার পক্ষে কোন প্রমাণই পাওয়া যায় নি। বৈজ্ঞানিকরা একমত যে ২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনের উহানে প্রথম অন্য প্রাণী থেকে করোনাভাইরাস মানবদেহে সংক্রমিত হয়েছিল। চীনের সৃষ্টি করোনাভাইরাস ইতালির জাতীয়তাবাদী নেতা মাত্তিও সালভিনি তার সমর্থকদের উদ্দেশে বলেছেন যে চীনই একটি ল্যাবরেটরিতে করোনাভাইরাস সৃষ্টি করেছে। এটাও আরেকটা মিথ্যে দাবি। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় এ দাবি ব্যাপক ভাবে শেয়ার হয়। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের টুইট যদিও বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত যে কোভিড ১৯ মানুষের তৈরি কোন ভাইরাস নয়। ম্যালেরিয়ার ওষুধে কোভিড ১৯ সেরে যাবে ভুয়া তথ্য প্রচারের জন্য ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জায়ার বোলসোনারোর অনেক উক্তি সেন্সর করেছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্র্রাম, টুইটার এবং ইউটিউবের মত সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলো। এসব পোস্টের একটিতে তিনি দাবি করেছিলেন ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন সম্পূর্ণরূপে করোনাভাইরাস সারাতে পারে। আসলে এ নিয়ে পরীক্ষা হয়েছে, ওষুধটি পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগও হচ্ছে কিন্তু সার্বিকভাবে এর কার্যকারিতা প্রমাণিত হয় নি। দুর্বল মিউটেশন ভারতের একজন উর্ধতন রাজনীতিবিদ সুব্রামানিয়াম স্বামী দাবি করেন ভারতে যে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে তা এ ভাইরাসের একটি দুর্বল মিউটেশন এবং মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা একে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে পারে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: করোনাভাইরাস: বাংলাদেশে কারা পাচ্ছেন পিপিই? করোনাভাইরাসের লিঙ্গ বৈষম্য: কেন পুরুষরা বেশি মারা যাচ্ছে? করোনাভাইরাসের ওষুধ, টিকা কি এ বছরই আসবে বাজারে? লকডাউনের ভেতর কীভাবে এত মানুষ জানাজায় যোগ দিল? তবে গবেষকরা কিন্তু এমন কথা বলছেন না। সব ভাইরাসেরই মিউটেশন বা পরিবর্তন হয় কিন্তু বিজ্ঞানীরা এমন কোন নমুনা এখনো পান নি যে কোভিড ১৯ কত মারাত্মক হতে পারে । আসলে এ ব্যাপারে অনেক কিছুই এখনো মানুষের অজানা। এই কোভিড ১৯ আমাদের সবার জন্যই বিপদের কারণ – কিন্তু তা অনলাইনে ভুয়া দাবির যে ভাইরাস বিশ্বব্যাপি ছড়াচ্ছে - তা ঠেকাতে পারেন��। করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে নানা রকম উদ্ভট ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বা দাবি অনলাইনে নিয়মিত ছড়াচ্ছে। +text: বহু ধরণের সামুদ্রিক প্রাণীই প্লাস্টিক খায়, কারণ সাগরে ভেসে থাকা প্লাস্টিকে খাবারের মতোই গন্ধ বের হয়। প্লাস্টিক তো দেখতে কোন খাবারের মতো নয়। এর কোন গন্ধও নেই। তারপরও কেন প্লাস্টিক খাচ্ছে তারা? বিজ্ঞানী এরিক জেটলার অবশ্য এ কথার সঙ্গে একমত নন। তিনি একজন মাইক্রোবায়াল ইকোলজিস্ট। কাজ করেন নেদারল্যান্ডসের রয়্যাল ইনস্টিটিউট ফর সী রিসার্চে। "এর পরের বার যখন সমূদ্র সৈকতে যাবেন তখন এক টুকরো প্লাস্টিক কুড়িয়ে নিয়ে সেটার গন্ধ শুঁকে দেখুন। মেছো গন্ধ পাবেন।" এরিক জেটলার এর কারণও ব্যাখ্যা করলেন। সমূদ্রে সব প্লাস্টিকের ওপরই দ্রুত এক ধরণের মাইক্রোব বা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীবাণুর আস্তরণ পড়ে। বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় একে বলা হয় 'প্লাস্টিস্ফেয়ার।' এই পিচ্ছিল জীবন্ত আস্তরণ থেকে যে রাসায়নিক নির্গত হয়, সেটাই আসলে প্লাস্টিককে লোভনীয় খাদ্যে পরিণত করে। কারণ প্লাস্টিক থেকে তখন খাদ্যের মতোই গন্ধ বের হয় এবং এর স্বাদও হয় সেরকম। সাগরে প্লাস্টিকের বর্জ্য আগামী এক দশকে আরও তিন গুন বাড়তে পারে। একটি বিশেষ যৌগ ডাইমিথাইল সালফাইড (ডিএমএস) এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যেসব সামুদ্রিক পাখি প্লাস্টিক খায়, তাদের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা এরকম। তবে কিছু কিছু প্রাণী, যেমন তিমি যখন প্ল্যাংকটন খাওয়ার জন্য পানি ছাঁকে, তখন আসলে তারা এর সঙ্গে প্লাস্টিকও গিলে ফেলে। বিশ্ব জুড়েই সমুদ্রে প্লাস্টিকের আবর্জনা বাড়ছে। ২০১৫ সালের এক সমীক্ষা অনুযায়ী বছরে সমুদ্রে গিয়ে পড়ছে প্রায় আশি লাখ মেট্রিক টন প্লাস্টিক। কিছু প্লাস্টিক সামুদ্রিক স্রোতে গিয়ে ঘুরপাক খেতে থাকে। এরকম স্রোতে পড়লে, তখন প্লাস্টিক ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে 'মাইক্রোপ্লাস্টিক কনা'য় পরিণত হয়। তখন এই মাইক্রোপ্লাস্টিক চলে যায় সামুদ্রিক জীবের পেটে। আরও পড়ুন: সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ‘পৃথিবীর সমুদ্রে মাছের থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য বেশি থাকবে’ প্লাস্টিক রিসাইকেলের কারণে কি দূষণ কমছে? এই প্লাস্টিক সামুদ্রিক প্রাণীর কি ক্ষতি করছে? "প্লাস্টিকের কারণে সামুদ্রিক প্রাণী শ্বাসরুদ্ধ হয়ে বা খাদ্যাভাবে মারা যেতে পারে, কারণ প্লাস্টিক তাদের পরিপাকনালী রুদ্ধ ক���ে দিচ্ছে," বলছেন রসকাইলড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ক্রিস্টিয়ান সাইবার্গ। প্লাস্টিকের কারণে ইতেমোধ্য কিছু জাতের অ্যালবাট্রস পাখির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিবিসির ডকুমেন্টারি 'ব্লু প্ল্যানেট-টু' যারা তৈরি করেছেন, তারা ভালোভাবেই দেখার সুযোগ পেয়েছেন কিভাবে নানা ধরণের সামুদ্রিক প্রাণী প্লাস্টিকের দূষণের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বিশ্বের দূর্গমতম অঞ্চলের সাগর তীরেও গিয়ে পৌঁছেছে প্লাস্টিকের বর্জ্য কিন্তু সমুদ্রকে কিভাবে প্লাস্টিকের দূষণমুক্ত রাখা যাবে? গত ৮ই সেপ্টেম্বর প্রশান্ত মহাসাগরে এক বিরাট পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচী শুরু হয়েছে। এই কর্মসূচীর আওতায় সাগরে ছয়শ মিটার লম্বা 'ফ্লোটার' পাঠানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যা প্রতি মাসে পাঁচ টন করে প্লাস্টিক ছেঁকে তুলতে পারবে। ক্রিস্টিয়ান সাইবার্গ মনে করেন সাগরে এরকম পরিচ্ছন্নতা অভিযান অবশ্যই ভালো পদক্ষেপ। কিন্তু তার মতে, এই সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান আসলে সাগরে প্লাস্টিক ফেলা পুরোপুরি বন্ধ করা। সেটা এক মাত্র সম্ভব আমরা সবাই যদি প্লাস্টিক ব্যবহার এবং ছুঁড়ে ফেলার অভ্যাস পুরোপুরি পাল্টে ফেলতে পারি। একেবারে ক্ষুদ্রতম প্ল্যাংকটন থেকে শুরু করে অতিকায় প্রাণী- সব ধরণের সামুদ্রিক প্রাণীই যে প্লাস্টিক খাচ্ছে তার অনেক প্রমান পাওয়া গেছে। +text: ঢাকার একটি কওমি মাদ্রাসা। একাধিক মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে লকডাউন শুরু হওয়ার পর তাদের আয় কমে গেছে। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানই শিক্ষকদের ঠিকমতো বেতন দিতে পারছেন না। সরকারি হিসাবে বাংলাদেশে ১৪ হাজার ৩৯৭ কওমি মাদ্রাসা রয়েছে। তবে কওমি সংশ্লিষ্টদের দাবি, সারা দেশে মাদ্রাসার সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। এসব প্রতিষ্ঠানে ২২ লাখের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে বলে তারা বলছেন। বাংলাদেশে ছয়টি পৃথক আঞ্চলিক বোর্ডের মাধ্যমে এসব মাদ্রাসা পরিচালিত হয়। আর্থিক সংকটে কওমি মাদ্রাসা বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসাগুলো মূলত স্থানীয় সাহায্য, অনুদান ও শিক্ষার্থীদের বেতনের ওপর নির্ভর করে পরিচালিত হয়। দারুল উলুম দেওবন্দের রীতিনীতি অনুসরণ করে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সরকারি কোন সহায়তা গ্রহণ করেনা এসব মাদ্রাসা। সাধারণত এসব মাদ্রাসার অনুদানের সবচেয়ে বড় অংশটি আসে রমজান মাসে। কিন্তু এই বছর রমজানে লকডাউনের ফলে বেশিরভ���গ মানুষের আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় মাদ্রাসাগুলোরও আয় হচ্ছে না, ফলে সেগুলো পরিচালনা করাও কঠিন হয়ে পড়ছে। আরো পড়ুন: বাংলাদেশে কওমী মাদ্রাসায় পড়ছে কারা? বাংলাদেশে কওমী মাদ্রাসায় কী পড়ানো হয়? কওমী শিক্ষা বোর্ডের নেতাদের মধ্যে বিরোধ কেন? দাওরায়ে হাদিস ডিগ্রি এখন মাস্টার্সের সমমানের সিলেটের একটি কওমি মাদ্রাসা শরীফগঞ্জ তাহফিজুল কুরআন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সাইফুল ইসলাম বলছেন, ''আমাদের বেশিরভাগ সাহায্য আসে বিদেশ থেকে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে যারা আমাদের সাহায্য করবেন, তাদের নিজেদেরই আয় রোজগার নেই। স্থানীয় ব্যবসাবাণিজ্যও বন্ধ, ফলে তাদের কাছ থেকেও তেমন সহায়তা আসছে না।'' তার এই প্রতিষ্ঠানে ১৬ জন শিক্ষক আর ২৩০ শিক্ষার্থী আছে। এখন প্রতিষ্ঠান ছুটি দিয়ে দেয়া হয়েছে। শিক্ষকদের কারো কারো বেতন বাকি পড়েছে। তাদের বলে দেয়া হয়েছে, পরবর্তীতে আয় হলে বেতন দেয়া হবে। ঢাকার একটি মাদ্রাসা জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া সাত মসজিদ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মাহফুজুল ইসলাম বলছেন, ''করোনাভাইরাসে যে আমাদের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো সংকটে পড়েছে, সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। অনেক প্রতিষ্ঠান শিক্ষকদের বেতন দিতে পারছে না, চালাতে পারছে না। আগে যারা সাহায্য সহযোগিতা করতেন, তাদের ইচ্ছা থাকলেও তারা সেভাবে করতে পারছেন না।'' তাদের এই প্রতিষ্ঠানে ১২০০ শিক্ষার্থী আর শিক্ষক-কর্মচারী মিলে ৮০ জন রয়েছেন। করোনাভাইরাসের কারণে আয় কমে গেছে কওমি মাদ্রাসাগুলোর সরকারি সহযোগিতা ১৮৬৬ সালে কওমি মাদ্রাসা ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে যে মাদ্রাসাগুলো পরিচালিত হয়ে আসছে, তাদের কোন স্বীকৃতি ছিল না। তবে ২০১৭ সালে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে স্বীকৃতি দিয়েছে বাংলাদেশের সরকার। তবে সেই সময়েও আলোচনায় দেওবন্দের আদলে স্বতন্ত্র ও স্বকীয়তা বজায় রাখতে সরকারের আর্থিক সহযোগিতা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল কওমি নেতারা। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসসের খবর অনুযায়ী, রমজান উপলক্ষে দেশের ছয় হাজার ৯৫৯টি কওমি মাদ্রাসার জন্য আট কোটি ৩১ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে বাংলাদেশের সরকার। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে সেসব অর্থের বিতরণও শুরু হয়। কিন্তু কওমি মাদ্রাসার ছয়টি বোর্ডই সিদ্ধান্ত নেয় যে, রীতি মেনে তারা সরকারি এই অন���দান গ্রহণ করবেন না। তবে বিবিসি জানতে পেরেছে, দেশের বিভিন্ন স্থানের অনেক কওমি মাদ্রাসা এই অনুদান গ্রহণ করেছে। একেকটি প্রতিষ্ঠান ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার করে টাকা পেয়েছে। মাওলানা সাইফুল ইসলাম বলছেন, স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা মাধ্যমে তার প্রতিষ্ঠান ১০ হাজার টাকা পেয়েছে। তবে একই উপজেলার আরেকটি মাদ্রাসা বিলাছড়া মোকামবাজার ইশহাকিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, তাদের প্রতিষ্ঠান কোন অর্থ সহায়তা পায়নি। একজন অধ্যক্ষ বিবিসিকে জানিয়েছেন, যদিও সরকারি সাহায্যের পরিমাণ খুবই কম, কিন্তু স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অনুরোধে তারা সেই অর্থ সাহায্য গ্রহণ করেছেন। কওমি মাদ্রাসাগুলোর ছয়টি শিক্ষা বোর্ডের একটি বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ (বেফাক)সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ''আমরা বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছি সরকারি অনুদান গ্রহণ না করার, কারণ কওমি মাদ্রাসার সরকারি অনুদান গ্রহণের রীতি নেই। কিন্তু কোন মাদ্রাসা যদি সেটা নিতে চায়, আমরা কাউকে বাধাও দিচ্ছি না।'' ঢাকার একটি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মাহফুজুল ইসলাম বলছেন, ''সরকার যে অর্থ সহায়তার কথা বলছে, তা একেকটি মাদ্রাসার আসলে খুব একটা উপকারে আসবে না। কারণ ১০ হাজার, বিশ হাজার টাকা করে দেয়া হলেও, একেকটি মাদ্রাসার মাসিক খরচ এর বহুগুণ বেশি।'' তিনি বলছেন, দেওবন্দের রীতি তো আছেই, সেই সঙ্গে টাকার পরিমাণ কম হওয়ায় বহু মাদ্রাসা আর এটি গ্রহণ করতে আগ্রহী নয়। আর্থিক অনুদানের অপর্যাপ্ততার কথা মেনে নিয়ে বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মোঃ আব্দুল্লাহ বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ''কওমি মাদ্রাসাগুলোকে সাহায্য দিতে যে তালিকা এসেছিল সেটা সম্পূর্ণ তালিকা ছিল না। ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে মাদ্রাসাগুলোকে সাহায্য দেয়ার নতুন একটি তালিকা দেয়া হয়েছে, সেটা এখন বিবেচনায় রয়েছে।'' কওমি মাদ্রাসায় বহু শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয় পরিস্থিতি কীভাবে সামলাচ্ছে কওমি মাদ্রাসাগুলো ঢাকার একটি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মাহফুজুর রহমান বলছেন, ''সংকট তো আর চিরদিন থাকবে না। আমরা সবাইকে অনুরোধ করেছি একটু ধৈর্য ধারণ করার। পরিস্থিতি ভালো হলে নিশ্চয়ই সবকিছু আবার আগের মতো হবে।'' দেশে�� বিভিন্ন স্থানে কওমি মাদ্রাসাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকেই বেশিরভাগ মাদ্রাসা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নিজ বাড়ি বা আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে চলে গেছেন। শিক্ষকদের আংশিক বেতন দেয়া হয়েছে। বাকি টাকা পরবর্তীতে দেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। কোন কোন মাদ্রাসা রমজানের কারণে কিছুটা আর্থিক সহায়তা পাচ্ছে। আবার অনেকে অপেক্ষা করছেন ঈদুল আযহার জন্য, যে সময় চামড়া সংগ্রহ করে মাদ্রাসাগুলো বড় একটি আয় করে থাকে। এসব মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ আশা করছে, লকডাউন উঠে যাওয়ার পর আস্তে আস্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারা আবার স্থানীয় সাহায্য-অনুদান পেতে শুরু করবেন এবং তাদের সংকট কেটে যাবে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে টানা লকডাউনের কারণে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোতেও। +text: ধূমপায়ীর সংখ্যা কোথাও কমেছে আবার কোথাও বেড়েছে। ২০১৬-১৭ সালে দেখা গেছে দেশটিতে ধূমপায়ীর সংখ্যা অতীতের তুলনায় ১০ লাখ কমেছে। কিন্তু বিশ্বজুড়ে তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য নানা কর্মসূচী থাকলেও সার্বিকভাবে পুরো বিশ্বে ধূমপায়ীর সংখ্যা বেড়েছে। বিশ্ব তামাক বিরোধী দিবসে বিবিসি দেখার দেখার চেষ্টা করেছে পৃথিবীর কোন দেশগুলোতে সবচেয়ে বেশি ধূমপান করা হয় এবং কোন দেশে ধূমপানের প্রবণতা সবচেয়ে কম। আরো পড়ুন: সিগারেট খেয়ে দশজনে মারা যাচ্ছে একজন বাংলাদেশে 'নারীদের মধ্যে তামাক এবং মাদক ব্যবহার বাড়ছে' কিরিবাতি: জনসংখ্যার অনুপাতে এ দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে সবচেয়ে বেশি মানুষ ধূমপান করে। এখানে পুরুষদের তিনভাগের দুইভাগ এবং নারীদের এক-তৃতীয়াংশের বেশি ধূমপান করে। প্রশান্ত মহাসাগরের এ দ্বীপ দেশটিতে মোট জনসংখ্যা এক লাখ তিন হাজার। দেশটিতে তামাক নিয়ন্ত্রণের ঢিলেঢালা নীতি এবং সিগারেটের উপর কর কম হওয়ার কারণে ধূমপায়ীর সংখ্যা বেশি। মন্টেনিগ্রো: সমগ্র ইউরোপের মধ্যে মন্টেনিগ্রোতে ধূমপায়ীর হার সবচেয়ে বেশি। পূর্ব ইউরোপের দেশ মন্টেনিগ্রোতে ৪৬ শতাংশ মানুষ ধূমপান করে। এ দেশটির জনসংখ্যা ছয় লক্ষ তেত্রিশ হাজার। দেশটিতে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি বছরে চার হাজারের বেশি সিগারেট পান করে। জনসমাগমের জায়গায় ধূমপান নিষিদ্ধ হলেও অফিস, রেস্টুরেন্ট, বার এবং গণ পরিবহনে ধূমপান করে মানুষজন। গ্রিস: প���থিবীর তৃতীয় সর্বোচ্চ ধূমপায়ীর দেশ গ্রিসে মোট পুরুষ জনসংখ্যার অর্ধেক ধূমপান করে। নারীদের মধ্যে ধূমপান করে প্রায় ৩৫ শতাংশ। ২০০৮ সালে দেশটিতে পাবলিক প্লেসে ধূমপান নিষিদ্ধ করা হলেও মানুষজন সর্বত্রই ধূমপান করে। দেশটিতে প্রতিবছর প্রচুর অবৈধ সিগারেট আসে। পূর্ব তিমুর: এ দেশটি পৃথিবীর সবচেয়ে ধূমপায়ী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। এখানে ৮০ শতাংশ ধূমপান করে। পৃথিবীর যেসব দেশে পুরুষরা সবচেয়ে বেশি ধূমপান করে, পূর্ব তিমুর তাদের মধ্যে সবচেয়ে উপরে। তবে এখানে নারীদের মধ্যে মাত্র ছয় শতাংশ ধূমপান করে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দরিদ্র এ দেশটিতে তামাক সমাজের অংশ হয়ে গেছে। এখানে এ প্যাকেট সিগারেটের দাম এক ডলারের কম। যদিও সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে স্বাস্থ্য সতর্কতা বার্তা দেয়া আছে, কিন্তু এটি বাস্তবে অর্থহীন হয়ে রয়েছে। কারণ এ দেশটির প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিকদের মধ্যে অর্ধেক নিরক্ষর। রাশিয়া: পৃথিবীর সবচেয়ে ধূমপায়ী দেশগুলোর মধ্যে রাশিয়া পঞ্চম অবস্থানে। এখানে ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে পুরুষদের ৬০ শতাংশ ধূমপান করে। নারীদের মধ্যে ধূমপায়ীর ২৩ শতাংশ। গণ-পরিবহন এবং কর্মক্ষেত্রে ধূমপান নিষিদ্ধ হলেও সিগারেটের হরেক রকমের বিজ্ঞাপন ধূমপায়ীর সংখ্যা বৃদ্ধি করছে। অনেক দোকানে এক প্যাকেট সিগারেটের দাম এক ডলারের কম। রাশিয়ায় সিগারেটের বাজার ২২ বিলিয়ন ডলারের বেশি। ধূমপানের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি নিয়ে বারবার সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা। যেসব দেশে ধূমপায়ীর হার কম : যেসব দেশে ধূমপায়ীর হার সবচেয়ে কম সেগুলো হচ্ছে - গানা, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, ইরিত্রিয়া এবং পানামা। বিশ্বজুড়ে গড়ে ২২ শতাংশ মানুষ ধুমপান করলেও আফ্রিকায় প্রায় ১৪ শতাংশ মানুষ ধূমপান করে। গানা, ইথিওপিয়া এবং নাইজেরিয়া তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। তাছাড়া এসব দেশে নারীদের ধূমপান করার বিষয়টিকে সামাজিকভাবে অনৈতিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইথিওপিয়াতে এক ধরনের ছোট গাছের পাতা চিবিয়ে থাকে মানুষজন। এটির নাম 'খাট'। এ পাতা চিবানোর কারণে ধূমপান করার প্রবণতা কম মানুষের মাঝে। পৃথিবীর যেসব উচ্চ আয়ের দেশ আছে সেখানেও ধূমপায়ীদের সংখ্যা কমেছে। ধূমপান বিরোধী নানা পদক্ষেপ এবং সিগারেটের দাম বৃদ্ধির কারণে ধূমপায়ীর সংখ্যা কমেছে। তামাকজাত পণ্যের বাজার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে, চীনে সবচেয়ে বেশি তামাক উৎপাদন এবং ব্যবহার করে। দেশটিতে ৩০ কোটি মানুষ ধূমপান করে অর্থাৎ পৃথিবীর মোট ধূমপায়ীর এক তৃতীয়াংশ চীনে। তবে এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে বিগত দুই দশকের তুলনায় চীনে ধূমপায়ীর সংখ্যা কমেছে। পৃথিবীর যে দেশে পুরুষদের চেয়ে নারীরা বেশি ধূমপান করে সেটি হচ্ছে ডেনমার্ক। ইউরোপ-জুড়ে নারীদের ধূমপানের প্রবণতা পৃথিবীর অন্য অঞ্চলের তুলনায় বেশি। তামাকজাত পণ্য ব্যবহারের কারণে প্রতি বছর ৬০ লাখ মানুষ মারা যায়। ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর এক হিসবে বলা হচ্ছে পৃথিবীজুড়ে তামাকজাত পণ্যের বাজার প্রায় ৭৭০ বিলিয়ন ডলার। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: জিয়াউর রহমানের মৃতদেহের খোঁজ মিলল যেভাবে ভারতে মুসলমানদের অনেকেই অচ্ছুত 'ভারত স্থিতিশীল থাকলে বাংলাদেশ স্থিতিশীল থাকবে' পৃথিবীর যে কয়েকটি দেশে ধূমপান কমেছে তার মধ্যে ফ্রান্স সবার উপরে রয়েছে। +text: রামমন্দির নির্মানকাজ উদ্বোধন উপলক্ষ্যে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী মোদী ধর্মীয় অনুষ্ঠানের শেষে মি. মোদী এক ভাষণ শুরুই করেন রামায়ণের একটি পংক্তি উদ্ধৃত করে। তিনি বলেন, "ভগবান রামের কাজ না করলে আমার শান্তি কিসে হবে?" ভূমিপুজো দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদীসহ অন্যরা "রামলালা [হিন্দুদের কাছে ভগবান রামের ছোট বয়সের রূপকে রামলালা বলা হয়] অনেকদিন ধরেই একটি অস্থায়ী তাঁবুতে থাকছেন। কয়েক শতাব্দী ধরে যা চলে আসছে - একবার ধ্বংস আরেকবার নির্মাণ - এই চক্র থেকে আজ রাম জন্মভূমি মুক্তি পেল। এই উপলক্ষ্যে ১৩০ কোটি ভারতবাসীকে আমার প্রণাম।" রামচন্দ্রকে ভারতীয় সংস্কৃতির আধার বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তার কথায়, "ভগবান শ্রীরামের মন্দির আমাদের সংস্কৃতির আধুনিক প্রতীক, শাশ্বত আস্থার প্রতীক হয়ে উঠবে। এই মন্দির কোটি কোটি মানুষের মিলিত শক্তির প্রতীক হয়ে উঠবে।" ভাষণের আগে ভূমিপুজো করে তিনি প্রস্তাবিত মন্দিরটির গর্ভগৃহ যেখানে তৈরি হবে, সেখানে একটি রুপার ইট রাখেন। মন্দির তৈরি উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উল্লাস প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে বুধবারই নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার অযোধ্যায় গিয়েছিলেন। সেখানে পৌঁছে তিনি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্দির পরিদর্শন করেন। মি. মোদী ছাড়া ভূমিপুজোর কাছাকাছি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভগবত এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী ���দিত্যনাথ সহ অতি বিশিষ্ট কয়েকজন হাজির ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন প্রায় তিনদশক ধরে চলতে থাকা রামমন্দির আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সাধু-সন্তরাও। তবে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময়ে রামমন্দির আন্দোলনের নেতৃত্ব যারা দিয়েছিলেন, সেই লালকৃষ্ণ আদভানি বা মুরলী মনোহর যোশী এদিন অযোধ্যায় যাননি। আমন্ত্রণ যায়নি রামমন্দির আন্দোলনের আরেক শরিক মহারাষ্ট্রের শিবসেনা দলকেও। তারা ভূমিপুজো চলাকালীনই জানান, "কর সেবকদের আত্মত্যাগ যারা রামমন্দিরের ভূমিপুজোর দিনে ভুলে যায়, তাদের 'রামদ্রোহী' বলা উচিত।" উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের জায়গায় তৈরি করা হচ্ছে রাম মন্দির করোনা মহামারির জন্য ভারতে এখন ধর্মীয় জমায়েত নিষিদ্ধ থাকলেও প্রস্তাবিত রামমন্দিরের ভূমিপুজো অনুষ্ঠানের আশপাশে হাজার হাজার ভক্ত হাজির হয়েছিলেন। অযোধ্যায় উপস্থিত বিবিসি-র সংবাদদাতা সর্বপ্রিয়া সাঙ্গোয়ান জানাচ্ছেন, তাদের বেশিরভাগই সামাজিক দূরত্ব বিধি বা মাস্ক পরার নিয়ম মানেননি। আরো পড়তে পারেন: মসজিদের জমি অযোধ্যার বাইরে, মুসলিমদের ক্ষোভ বাবরি মসজিদ-রাম মন্দির বিতর্ক: ফিরে দেখা ইতিহাস 'বাবরি মসজিদ অক্ষত থাকলে কি এই রায় কখনও আসত?' রামমন্দির নির্মান উপলক্ষে সারা দেশেই হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির নেতাকর্মীরা উৎসব করেছেন। অন্যদিকে ভারতের মুসলমানদের অনেকেই দিনটিকে কালাদিবস হিসাবে পালন করছেন নিজেদের সামাজিক মাধ্যমের প্রোফাইল কালো রঙ দিয়ে। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড এক টুইট করে জানিয়েছে, "বাবরি মসজিদ একটা মসজিদ ছিল আর থাকবে। আয়া সোফিয়া আমাদের কাছে একটা বড় উদাহরণ।" "অনায্য, লজ্জাজনক এবং সংখ্যাগরিষ্ঠকে খুশি করার মতো একটি রায়ের সুযোগ নিয়ে জমির দখল নেওয়া হলেও তার অবস্থান বদলাতে পারবে না কেউ। ভেঙ্গে পড়বেন না। অবস্থা চিরকাল একরকম থাকবে না।" বাবরি মসজিদ আর রামজন্মভূমির জমি নিয়ে যে মামলা সুপ্রীম কোর্ট অবধি গড়িয়েছিল, তাতে মুসলিম পক্ষের হয়ে প্রধান আইনী লড়াই চালিয়েছেন লখনৌয়ের প্রবীণ আইনজীবি জাফরইয়াব জিলানি। অনুষ্ঠান দেখতে সেখানে জমায়েত হয় বহু মানুষ তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "সুপ্রীম কোর্ট তো মেনেই নিয়েছে যে ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ভাঙ্গা হয়েছিল। সেই ঘটনারও নিন্দা করেছিল সর্বোচ্চ আদালত। সেখানে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী আজ কী করে বল���েন যে ওখানে কয়েক শতাব্দী ধরে রামলালা অবস্থান করছেন!" "আর আজ সংবিধানকে অন্যভাবেও বুড়ো আঙ্গুল দেখানো হল - একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ধর্ম নিরপেক্ষ দেশের প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যের গর্ভনর কীভাবে উপস্থিত থাকেন!! এটা যদি শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান হত, তাতে কিছু বলার ছিল না, কিন্তু এটা তো সরকারী অনুষ্ঠান ছিল," বলছিলেন জাফরইয়াব জিলানি। তবে অনেক মুসলমানই মনে করেন যে সুপ্রীম কোর্টের রায়কে সম্মান জানানোই উচিত। যদিও রামমন্দির নির্মাণের আজকের অনুষ্ঠানকে একটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠান বলে মন্তব্য করছিলেন ভারতীয় মুসলিম মহিলা আন্দোলনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা জাকিয়া সোমান। মিজ. সোমানের কথায়, "সুপ্রীম কোর্ট মন্দির মসজিদ বিতর্ক নিয়ে যে রায় দিয়েছে, তাকে সম্মান জানানোই উচিত। কিন্তু আজ যে অনুষ্ঠান হল, তা থেকে রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আসলে রামজন্মভূমি নিয়ে যে আন্দোলন হয়েছে, তা তো রাজনৈতিক কর্মকান্ডই ছিল।" ভারতের অযোধ্যায় যেখানে প্রায় ৫০০ বছর পুরনো বাবরি মসজিদ ছিল ১৯৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত, সেই জায়গাতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার রামমন্দির নির্মানের সূচনা করেছেন। +text: পশ্চিমবঙ্গে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ আর হাওড়াতে ব্যাপক বিক্ষোভের সময়ে বেশ কয়েকটি ট্রেন আর দুটি রেল স্টেশনে ভাঙচুর করা হয়েছে, জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বাস। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গা আর হাওড়ার উলুবেড়িয়া স্টেশন দুটিতে বিক্ষোভকারীরা ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে। উলুবেড়িয়া স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকটি ট্রেনেও পাথর ছোঁড়া হয়। তারপরে দুটি স্টেশনের সামনেই আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন লাইন। হাওড়া থেকে খড়্গপুর ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বেশ কিছু দূরপাল্লার ট্রেন আটকিয়ে পড়েছে। বেলডাঙ্গা স্টেশনেও একই ভাবে ভাঙচুর চলে শুক্রবার। ওই এলাকার কয়েকটি বাস আর গাড়িতেও ভাঙচুর চালানোর পরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিক্ষোভ হয় সেখানকার থানার সামনেও। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিজেপির এক রাজ্যস্তরের নেতা আক্রান্ত হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী এই বিক্ষোভগুলির খবর পাওয়ার পরেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন। বৈঠকের শেষে তিনি আবেদন জানিয়েছেন যাতে মানুষ গণতান্ত্রিক পথে, শান্তিপূর্ণভাবে তাদের প্রতিবাদ জানান। বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারেন: আসামে 'মুসলিম বিরোধী' আইন নিয়ে কেন উত্তেজনা নাগরিকত্ব বিল নিয়ে জ্বলছে আসাম; নিহত ২ ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল:যে কারণে এত বিতর্ক গুয়াহাটিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের গাড়িবহরে হামলা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভের খবর পাওয়ার পরেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন। আলিগড়ে ছাত্র বিক্ষোভ উত্তরপ্রদেশের আলিগড়েও শুক্রবার ছাত্র আর শিক্ষকরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। পৃথক মিছিলের শেষে তারা দাবি সনদ পেশ করেছেন নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনীগুলি প্রত্যাহার করার জন্য। মুসলমান ছাড়া প্রতিবেশি তিন দেশের সংখ্যালঘু মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য আনা বিলের বিরুদ্ধে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও শুক্রবার পথে নেমেছিলেন। তারা দাবি সনদ পেশ করার জন্য সংসদ ভবনের দিকে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ক্যাম্পাসেই ওই বিক্ষোভ মিছিল আটকিয়ে দেয় পুলিশ। ছাত্রদের ওপরে পুলিশ লাঠি চার্জ করে এবং কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে। তথাগত রায়ের টুইট মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে শুক্রবার পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে সেখানকার রাজ্যপাল তথাগত রায়ের একটি টুইট বার্তার পরে। বিজেপির প্রাক্তন নেতা মি. রায় টুইট করে লেখেন, ''সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে দুটি বিষয় কখনই ভুলে যাওয়া উচিত নয়। এক, এই দেশ ভাগ হয়েছিল ধর্মের ভিত্তিতেই। দুই, গণতন্ত্রে বিভাজন থাকবেই। কেউ যদি সেটা না চান, তাহলে উত্তর কোরিয়ায় চলে যেতে পারেন।'' হাজার হাজার মানুষ আজ মিছিল করছিলেন নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে। তার মধ্যেই এই টুইট বার্তার পরে মিছিল ঘুরে যায় রাজভবনের ফটকের দিকে। মেঘালয় রাজ্যে আগেই মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট আর এস এম এস পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। নাগরিকত্ব আইন: ক্ষোভে ফেটে পড়েছে আসাম, বিল বৈষম্যমূলক বলে অভিযোগ জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সফর বাতিল এই বিলের প্রতিবাদে আসামে হিংসাত্মক বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল আগেই। অন্যান্য রাজ্যেও বিচ্ছিন্নভাবে বিক্ষোভ, মিছিল চলছিল। এরই মধ্যে আসামের গুয়াহাটিতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, তা বাতিল হয়েছে। পিছিয়ে গেছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহর উত্তরপূর্ব ভারতের সফরও। শুক্রবার নতুন এই আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে গোয়াতেও। তবে আসামে যে বিক্ষোভ হচ্ছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে, তার সঙ্গে ভারতের অন্য প্রদেশে বিক্ষোভগুলির বিস্তর ফারাক আছে। আসামের মানুষ মনে করছেন যে নাগরিকত্ব আইনে সংশোধন আনার ফলে হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে কথিত অবৈধ বাংলাদেশীরা ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার ছাড়পত্র পেয়ে যাবেন। আর তখন আসামের মূলনিবাসীদের ভাষা,সংস্কৃতি সহ অস্তিত্বই সঙ্কটের মুখে পড়বে। তারা এও বলছেন, এনআরসি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যে বিপুল সংখ্যায় বাংলাভাষী হিন্দুদের নাগরিকত্ব নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে, তাদের আইনে পরিবর্তন এনে ভারতীয় নাগরিক হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে বিজেপি নেতৃ্ত্বাধীন সরকার। আসামের প্রতিবাদী সংগঠনগুলো বলছে কোনও ধর্মের ভিত্তিতে নয়, কোনও অবৈধ বাংলাদেশীকেই আসামে থাকতে দেওয়া যাবে না - তিনি হিন্দু হোন বা মুসলমান। ভারতের বিভিন্ন শহরে এই বিল বৈষম্যমূলক অভিযোগ করে এই বিল বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ হচ্ছে। রাষ্ট্রহীন করার চেষ্টা আসামের মুসলমানদের ক্ষোভ এই জন্য, যে, এনআরসি প্রক্রিয়া থেকে বাদ পড়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নাগরিকত্ব আইনে পরিবর্তন করে ভারতীয় হওয়ার সুযোগ দিলেও যে কয়েক লাখ মুসলমান এনআরসি তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন, তাদের এবার আক্ষরিক অর্থেই ভারতীয় নাগরিক হওয়ার আবেদনেরও সুযোগ না দিয়ে রাষ্ট্রহীন করার চেষ্টা করছে সরকার। আসামের বাংলাভাষী হিন্দুদের একটা বড় অংশ কিন্তু মনে করছে যে নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনের ফলে তারা লাভবান হলেও হতে পারেন। কিন্তু সন্দেহ রয়েছে তাদের মনেও। আসামের বাইরে অন্যান্য রাজ্যে যেসব বিক্ষোভ হচ্ছে, সেটা আসামের মুসলমান সমাজের ক্ষোভের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ হোক বা আলিগড় অথবা জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ এই কারণে যে, প্রতিবাদীরা মনে করছেন যে নতুন আইনে আসলে মুসলমানদের নাগরিকত্বহীন করার একটা প্রচেষ্টা আছে। ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক বিক্ষোভ হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ আর মেঘালয়ে। +text: বিদ্যুৎ বিলের ক্ষেত্রে অভিযোগ বেশি উঠছে। দিন দশেক আগে বিদ্যুৎ, খনিজ ও জ্বালানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, ৩০শে জুনের মধ্যে বকেয়া বিল না দিলে জরিমানা ও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। এরপর শিল্পখাতের নেতৃবৃন্দ কিস্তিতে বিল পরিশোধ করার সুবিধা দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। বকেয়া বিল নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে ঢাকার মগবাজারের বাসিন্দা রাজিয়া সুলতানা ও তার পরিবার একটি ভবনের মালিক। সেখানে দশটি ফ্ল্যাট ভাড়া দেয়া রয়েছে। সব ধরনের বিল ভাড়ার টাকার মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত করা। রাজিয়া সুলতানা বলছেন গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির বিল বাবদ ১০ টি ফ্ল্যাটে সবমিলিয়ে বিল এসেছে ৮০ হাজার টাকার মতো। কয়েকজন ভাড়াটিয়ার অনুরোধের পর ভাড়া কমিয়েছেন তিনি। নিচতলায় একটি ফ্ল্যাটে তিনমাস ভাড়াই পাননি। চুলা প্রতি গ্যাসের নির্ধারিত বিল রয়েছে। তিনি বলছেন, "একবারে এতগুলো টাকা দেয়া একটা সমস্যা না? সরকার সুবিধা তো দিলোই না উল্টা আরও অসুবিধা করে ফেললো। একসাথে এত বিল সরকারের কারণেই জমল। এখন বলছে ৩০ তারিখের মধ্যে বিল না দিলে লাইন কাটা হবে।" তিনি বলছেন, বিদ্যুতের ক্ষেত্রে যত বেশি ইউনিট ব্যবহৃত হবে, ইউনিট প্রতি মূল্যও বাড়তে থাকবে। এখনকার নিয়ম অনুযায়ী সর্বনিম্ন ৫০ ইউনিট ব্যবহার করলে ইউনিট প্রতি দাম ৩ টাকা ৫০ পয়সা। চারশোএক থেকে ৬০০ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহার করলে ইউনিট প্রতি দাম হবে ৯ টাকা ৩০ পয়সা। যদি ৬০০ ইউনিটের বেশি ব্যবহৃত হয় তাহলে ১০ টাকা ৭০ পয়সা। রাজিয়া সুলতানা বলছেন, "মিটার না দেখে উল্টাপাল্টা বিল দিয়ে গেছে। রিডিং না দেখে আমার ইউনিট ব্যবহার বেশি দেখালে বিদ্যুতের বিলও বেশি আসবে। এই সমস্যা নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসে দৌড়াদৌড়ি করলাম। তারা বলছে কিছু করতে পারবে না।" দেরিতে বিল নেয়া সম্পর্কে এর আগে যা বলা হয়েছে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে সাধারণ ছুটি শুরুর পর, সরকার ঘোষণা করেছিল যে ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত আবাসিক গ্রাহকদের বিদ্যুৎ ও গ্যাস ব্যবহারের বিলম্বিত বিল পরিশোধে কোনো অতিরিক্ত জরিমানা নেয়া হবে না। এরপর তাতে জুন মাসও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গ্রাহকরা সাধারণত বিভিন্ন ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে থাকেন। এসব জায়গায় গ্রাহকরা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হতেন পারেন সেই আশংকা থেকে দেরিতে বিল পরিশোধের এই সুবিধা ঘোষণা করা হয়েছিল। করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন টাকা�� মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? বিশ্ব মহামারি শেষ হতে কতদিন লাগবে? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় করোনাভাইরাস: শিশুরা যেভাবে এই মহামারির নীরব শিকার এই পুরো সময়ে বাসাবাড়িতে বিলের কাগজ দেয়া হয়নি। বিল জমা নেয়াও বন্ধ ছিল। ঢাকার মোহাম্মদপুরে বোরকা ও গুড়ো মশলা প্রস্তুতকারী দুটো কারখানা এবং একটি শোরুমের মালিক কামরুন নাহার। তিনি বলছেন সাধারণ ছুটি চলাকালীন তার কারখানা ও শোরুম পুরোটাই বন্ধ ছিল। এরপরও কিভাবে এত বিদ্যুৎ বিল এলো সে নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলছেন, "সবকিছু চলার পরও সবমিলিয়ে আমার সাত আট হাজার টাকা বিল আসে। এর কমও আসে। যেখানে কোন প্রকার ইলেক্ট্রিসিটি ব্যবহারই করা হয়নি, আমার ফ্যাক্টরি বন্ধ ছিল, শোরুমের এসি, লাইট, ফ্যান কিছু চলেনি তারপরও এর থেকে বেশি বিল আসছে। এত বিল কোথা থেকে আসলো?" যা বলছেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এরকম অভিযোগ আরও অনেকেই করছেন। একই বিল দুবার পাওয়ার অভিযোগও উঠেছে। বিশেষ করে বিদ্যুৎ বিলের ক্ষেত্রে অভিযোগ বেশি উঠছে। যত বেশি ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হবে, ইউনিট প্রতি মূল্যও বাড়তে থাকবে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে বিদ্যুৎ, খনিজ ও জ্বালানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এক প্রেস ব্রিফিং-এ বলেছিলেন ৩০শে জুনের মধ্যে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের বকেয়া বিল পরিশোধ না করলে জরিমানা করা হবে এবং সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হবে। নসরুল হামিদ বিবিসিকে বলেছেন, "এরকম সমস্যা যে হবে তা আগে আমরা বলে রেখেছিলাম। যে আমরা তিন মাস বিল নেবো না। এরপর আপনাকে বিলটা দিতে হবে। তো সেইভাবে যেন আপনারা প্রস্তুত থাকেন।" "এখন বাসাবাড়ি থেকে বিল দিচ্ছে না, ইন্ডাস্ট্রিগুলোও বিল দিচ্ছে না। যে বিল কালেকশন হয় তা মাসে চার হাজার কোটি টাকা। এর মাত্র দশ শতাংশ কালেকশন হয়েছে। আমি যদি বিল কালেকশন না করি তাহলে যাদের কাছ থেকে আমরা বিদ্যুৎ কিনেছি তাদের পেমেন্ট কিভাবে করবো? পাওয়ার প্ল্যান্টই বন্ধ হয়ে যাবে।" অন্যদিকে শিল্পখাতের নেতৃবৃন্দ ইতিমধ্যেই ছয় মাসের কিস্তিতে বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল পরিশোধের সুবিধা চেয়েছেন। ছয়মাসের পানির বিল মওকুফের অনুরোধও এসেছে। তবে এব্যাপারে এখনো কোন সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি সরকার। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর থেকে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল নেয়া বন্ধ থাকায় এখন মানুষজনকে একসাথে তিন চার মাসের বিল দিতে হচ্ছে। অনেকে অভিযোগ করছেন মিটার না দেখে ইচ্ছামতো বিল ধরা হয়েছে। +text: বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, র‍্যাব ও সেনা দপ্তরসহ নানা পক্ষ থেকে যে বক্তব্য এসেছে তার মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখা যাচ্ছে। আহত অবস্থায় আটক, অস্ত্র ছিল: বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে সেনা অভিযানের পরপরই ঢাকায় একটি সংবাদ সম্মেলনে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল নাইম হাসান বলেন, ''এর মধ্যেই পাইলট কন্ট্রোল টাওয়ারকে জানান যে, কথিত হাইজ্যাকার তার স্ত্রীর কোন বিষয় নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চান।" "এক ফাঁকে একজন ক্রু বাদে সকল ক্রুই বের হয়ে আসতে পারেন। পরে সেই ক্রুও বের হয়ে আসেন। তখন শুধুমাত্র কথিত হাইজ্যাকার বিমানে ছিল।'' মি. হাসান সাংবাদিকদের আরও বলেন, ''কথিত ছিনতাইকারী ব্যক্তিকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়েছে। তার কাছে একটি অস্ত্র ছিল এবং বুকে বোমা বাঁধা থাকতে পারে। সেরকম তার বাঁধা রয়েছে।'' তিনি আরও বলেন, ''তিনি (কথিত বিমান ছিনতাইকারী) পাইলটের মাথায় অস্ত্র ধরে দাবি করেছিলেন যে, তার স্ত্রীর সঙ্গে সমস্যা নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন।'' অন্যদিকে এয়ার মার্শাল নাইম হাসান জানান, ''কথিত ছিনতাইকারীকে খানিকটা মানসিক ভারসাম্যহীন বলে মনে হয়েছে। সাধারণত ছিনতাই ঘটনা যেমনটা দেখা যায়, তেমনভাবে সে যাত্রী বা ক্রুদের জিম্মি করার সেরকম চেষ্টা করেনি।'' এনকাউন্টারে আহত হয়ে পরে মারা যান, পিস্তল পাওয়া গেছে: সেনাবাহিনী তবে কিছুক্ষণ পরেই চট্টগ্রাম সেনা দপ্তরের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান জানান, "কম্যান্ডোদের আত্মসমর্পণের অনুরোধে সাড়া না দেয়ায় এনকাউন্টারে প্রথমে আহত এবং ঐ ব্যক্তি মারা যান"। জিওসি এস এম মতিউর রহমান জানান, হোলি আর্টিজান বেকারিতে [২০১৬ সালে ঢাকার গুলশানের রেস্তোঁরায় জঙ্গি হামলার সময়] কম্যান্ডোদের যে দলটি অভিযান পরিচালনা করেছিল, সেই একই দল এখানে অভিযানটি পরিচালনা করে। চট্টগ্রামে বিমানে অভিযান চালানোর পরের দৃশ্য। জে রহমান বলেন, ''আমাদের কম্যান্ডোরা বিমানের ভেতর অভিযান চালানোর পর তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলে। কিন্তু ���িনি সাড়া না দিয়ে আক্রমণাত্মক হওয়ার চেষ্টা করলে যা হওয়ার তাই হয়েছে।" "তার সঙ্গে আমাদের এনকাউন্টার হয়। তিনি প্রথমে আহত হন। পরে তিনি মারা গেছেন বলে আমি জানতে পেরেছি,'' তার কাছে শুধুমাত্র একটি পিস্তল পাওয়া গেছে বলে তিনি জানান। অস্ত্রধারী একজনকে আটক করা হয়েছে: বিমানবাহিনী বিমানবাহিনীর জহুরুল হক ঘাঁটির প্রধান মফিজুর রহমান সেদিন রাত আটটার দিকে বিমানবন্দরের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, ২৫-২৬ বছর বয়সী অস্ত্রধারী একজনকে আটক করা হয়েছে। তিনি বলেন, "যাত্রী-ক্রু সবাই সুস্থ আছেন। আটক ব্যক্তির সঙ্গে তিনি নিজেই কথা বলে বিষয়টি সুরাহা করেছেন। কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।" ওই অস্ত্রধারীর দাবি-দাওয়া কী ছিল - এ বিষয়ে মফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি সরাসরি উত্তর দেননি। তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ওই ঘটনা মনিটরিং করা হয়েছিল বলে তিনি তখন উল্লেখ করেন। পটকা জাতীয় বস্তুর বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল: মামলার বিবরণী সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ এই ঘটনায় সোমবার রাতে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানায় একটি মামলা করেছে । পতেঙ্গা থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া মঙ্গলবার বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, শাহ আমানত বিমানবন্দরের প্রযুক্তি সহকারী দেবব্রত সরকার বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। সেখানে এজাহারে বলা হয়েছে, একজন অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারী বিমানের মাঝখান দিয়ে দৌড় দিয়ে সামনের ককপিটে ঢোকার চেষ্টা করে। "তার হাতে বোমা ও অস্ত্র সদৃশ বস্তু দেখা যায়। সে তার কিছু দাবি-দাওয়া প্রধানমন্ত্রীকে শুনতে হবে বলে চিৎকার করে।" তিনি বলেন, "উক্ত দুষ্কৃতিকারী দুটো পটকা জাতীয় বস্তুর বিস্ফোরণ ঘটায়।" "অন্যথায় সে বিমানটি তার কাছে থাকা বিস্ফোরক দিয়ে ধ্বংস করে দেবে মর্মে হুমকি দেয়। সে অস্ত্র ও গোলাবারুদের হুমকি দিয়ে যাত্রী ও ক্রুদের জিম্মি করার চেষ্টা করে," বলা হয়েছে মামলার বিবরণীতে। এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, "দায়িত্বরত অবস্থায় বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে জানায় যে, বিজি-১৪৭ আকাশে ওড়ার ১৫ মিনিট পর বোমা সদৃশ বস্তু ও অস্ত্র দেখিয়ে বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করছে।" "পরে কমান্ডো ফোর্স বিমানটিতে অভিযান চালায়। ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী ব্যক্তির কাছ থেকে কিছু বোমা ও অস্ত্র সদৃশ বস্তু আলামত হিসেবে উদ্ধার করা হয়েছে যা যৌথ ��াহিনীর কাছে রয়েছে।" আরও পড়ুন: বিমান ছিনতাই চেষ্টাকারী ব্যক্তির সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিমান ছিনতাই চেষ্টা: ঘটনার শুরু থেকে শেষ বিমানে যা ঘটলো তার কী মূল্য দেবে বাংলাদেশ? চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে সেনা সদস্যদের একটি দল। কথিত ছিনতাইকারীর হাতে ছিল খেলনা পিস্তল: র‍্যাব এদিকে বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছিলেন যে ব্যক্তি সেই পলাশ আহমেদের কাছে যে অস্ত্রটি পাওয়া গেছে সেটি একটি খেলনা পিস্তল বলে জানিয়েছে র‍্যাব। গতকাল (সোমবার) এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের মুফতি মাহমুদ খান জানান, "কথিত ছিনতাইকারীর কাছে একটি খেলনা পিস্তল পাওয়া গেছে।" এছাড়া নিহত ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপ মিলিয়ে র‍্যাবের অপরাধী তথ্যভাণ্ডারে রক্ষিত তথ্যে একজন অপরাধীর সঙ্গে মিল পেয়েছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। র‍্যাব জানিয়েছে, নারী অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির একটি মামলায় এর আগে সে র‍্যাবের কাছে গ্রেপ্তার হয়েছিল। বিমান ছিনতাই চেষ্টার সময় নিহত হওয়া পলাশ আহমেদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট মাহিবী জাহান নামে ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত কমিটি এ ঘটনার পর সর্বশেষ গতকাল ২৫শে ফেব্রুয়ারি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী সংসদে ৩০০ বিধিতে দেয়া বিবৃতিতে বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুবাইগামী উড়োজাহাজ ময়ূরপঙ্খী (বিজি-১৪৭ ফ্লাইট) ছিনতাই চেষ্টার ঘটনার কারণ উদঘাটনে মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সংসদে তিনি বলেন, রোববার বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাইগামী বিমানের বিজি-১৪৭ ফ্লাইটটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালান এক যুবক। চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে বিমানটি ৫টা ৪০ মিনিটে জরুরি অবতরণের পর কমান্ডো অভিযান চালিয়ে জিম্মি দশা থেকে বিমানটি মুক্ত করা হয়, তিনি বলেন। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এই ঘটনার কারণ উদঘাটনে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। পরে পয়েন্ট অব অর্ডারে জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজী ও জাসদের মইনউদ্দীন খান বাদল একই বিষয়ের ওপর বক্তব্য দেন। বাংলাদেশের বন্দরনগরী চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক রুটের একটি বিমান ছিনতাই চেষ্টার পর ওই ছিনতাইকারী এবং তার সাথে থাকা 'অস্ত্র' নিয়ে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। +text: নির্বাচনী প্রচারণায় শিশুরা ভোটের যুদ্ধে ���িশুদের ব্যবহার না করার জন্য রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের আহ্বান জানিয়েছে 'শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশন' নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। এই দাবিতে এই সংগঠনটির সদস্যরা বুধবার ঢাকায় মুখে কালো কাপড় বেঁধে মানব-বন্ধন করেন। বাংলাদেশ শিশু আইন ২০১৩ অনুযায়ী কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে শিশুদের ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। এই আইন ভঙ্গ করা হলে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। ভোটের যুদ্ধে যেভাবে শিশুদের ব্যবহার চলছে বাংলাদেশের নির্বাচনের প্রচারণায় বরাবরই শিশুদের ব্যবহার করা হয়ে আসছে। শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুঈদ হাসান তড়িৎ বিবিসিকে জানান, নির্বাচনী প্রচারণার সময় শিশুদের দিয়ে মাইকিং এবং প্রচারপত্র বিলি করানো হচ্ছে । বিভিন্ন প্রার্থীর মিছিলের পুরোভাগেও শিশুদের রাখা হচ্ছে। ভোটের মাইকিং করছে এক শিশু। মি. হাসান বলেন, "আপনি দেখবেন প্রার্থীরা প্রচারের জন্য যে মিনিবাস বা ট্রাক ব্যবহার করেন সেখানেও শিশুদের দেখা যায়।" ভোটের দিন শিশুদের দিয়ে ভোটার স্লিপও বিলি করানো হয় বলে তিনি জানান। "মূলত দরিদ্র এবং ছিন্নমূল শিশুদের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ভোটের প্রচারে ব্যবহার করা হয়। সাধারণত এসব কাজের জন্য এদের দৈনিক ২০-২৫ টাকা এবং খাবার দেয়া হয়।" প্রার্থীরা এসব শিশুদের সস্তায় কাজ করায় কারণ একই কাজে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষকে নিয়োগ করা হলে তাতে নির্বাচনী ব্যয় বেড়ে যায়। বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বিবিসিকে বলেন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বিশেষভাবে শিশুদের ব্যবহার বন্ধ করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেয়ার তাগিদ দিয়ে কয়েক মাস আগেই তারা নির্বাচন কমিশনে চিঠি পাঠিয়েছেন। "নির্বাচন কমিশন তখন আমাদের জানায় যে তারা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে রিটার্নিং অফিসার এবং সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং নির্বাচনী প্রচারণায় প্রার্থীরা যেন শিশুদের ব্যবহার না করে, তা নিশ্চিত করতে হবে।" শিশুদের নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহারের বিরুদ্ধে ঢাকায় মানব-বন্ধন। আরও পড়তে পারেন: 'এই মুহূর্তে বাংলাদেশে গণতন্ত্র সম্ভবত অস্থিতিশীল' যেভাবে যৌনপল্লী থেকে মুক্তি পেলো মেয়েটি নোয়াখালী ৫ আসনের ফলাফল নির্ভর করছে যেসব বিষয়ের ওপর ভোটের লড়াইয়�� শিশুদের যেসব ঝুঁকি শিশু অধিকার নিয়ে যারা আন্দোলন করেন তারা বলেন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে শিশুদের ব্যবহার করা হলে তাদের সুরক্ষা ঝুঁকির মুখে পড়ে। শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুঈদ হাসান তড়িৎ জানান, নির্বাচনের প্রচারণায় শিশুদের ব্যবহার করা হলে পরবর্তী সময়ে তারা মাদক এবং সন্ত্রাসের দি‌কে ধাবিত হ‌তে পারে। এছাড়া ভোটের প্রচারের সময় কোন কারণে সহিংসতা হলে শিশুরাই তার প্রধান ভিকটিম হয় - কারণ ঐ ধরনের পরিস্থিতিতে তারা অসহায় হয়ে পড়ে। এছাড়া নির্বাচনী প্রচারের যানবাহনে শিশুদের ব্যবহার করা হলে তারা নানা ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে বলেও শিশু অধিকার কর্মীরা উল্লেখ করেন। বাংলাদেশে শিশু আইন ভঙ্গ করে নির্বাচনী প্রচারে শিশুদের যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। +text: ২০০৩ সালে বাংলাদেশের পাকিস্তান সফরের সময়কার করাচী স্টেডিয়ামের একটি ছবি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের সফরসূচি অনুযায়ী পাকিস্তানে দুটো টেস্ট ম্যাচ ও তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার কথা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তানে কেবলমাত্র টি-টোয়েন্টি খেলতে রাজি, তাও আবার একটি নির্দিষ্ট ভেন্যুতে। যদিও ভেন্যুর নাম প্রকাশ করেনি কোনো বোর্ড। তবে টেস্ট ম্যাচ খেলতে না চাওয়ায় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড ও দেশটির সরকার মহলে তীব্র অসন্তুষ্টি দেখা গিয়েছে। তার মধ্যে একটি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য, সেখানে ভারতের প্রসঙ্গ ব্যাপারটিতে বাড়তি একটি প্রেক্ষাপট নিয়ে এসেছে। শাহ মেহমুদ কোরেশী বলেন, "শ্রীলঙ্কা মাত্র খেলে গিয়েছে, তাদের ক্রিকেটাররা সবই ইতিবাচক বলেছেন। আমরা বাংলাদেশকে স্বাগত জানাই। বাংলাদেশ মনে হয় তৈরিই ছিল কিন্তু আমার ধারণা ভারত এখানে চাপ দিচ্ছে।" মূলত এই দ্বন্দ্ব শুরু হয় এর আগেই পাকিস্তান সফরে টেস্ট খেলা নিয়ে যখন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে আলাপ চলছে ভারতের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক বোর্ডের জয়েন্ট সেক্রেটারি জয়েশ জর্জ বলেছেন শেখ মুজিবুর রহমানের শতবর্ষ উৎযাপন উপলক্ষ্যে যে টি-টোয়েন্টি সিরিজ অনুষ্ঠিত হবে সেখানে যদি ভারতের ক্রিকেটার খেলে তাহলে পাকিস্তানের কোনো ক্রিকেটার নেয়া যাবে না। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের একজন মুখপাত্র বিবিসি উর্দুকে জানায়, এই খেলা হব�� এশিয়া একাদশ ও বিশ্ব একাদশের মধ্যে ১৮ ও ২১শে মার্চ। কিন্তু তখন তো পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা পাকিস্তান সুপার লিগে খেলবে। বিবিসি উর্দুকে পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ডের মুখপাত্র আরো বলেন, বাংলাদেশ মে মাসে একটি টেস্ট খেলতে চেয়েছে তাও আবার ইসলামাবাদে যেটা সম্ভব নয়। একে তো ইসলামাবাদে স্টেডিয়াম নেই এবং সে সময় রমজান মাস চলবে। এবারই প্রথম এমন একটি অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছে তিন দেশের ক্রিকেট বোর্ড। ক্রিকেট নিয়ে কিছু সংবাদ: ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফর: ভিন্ন মত বিসিবি ও পিসিবির ঢাকায় এশিয়া বনাম বিশ্ব একাদশ ক্রিকেট: পাকিস্তানীরা বাদ? 'কী দেখেছি তা বর্ণনা করার মতো না' এর আগে ১৯৯৭ সালের মে মাসে ভারতের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে যে খেলা হয়েছিল সেখানে ভারত, নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান অংশ নেয়। এই সিরিজেই সাইদ আনোয়ার ১৯৪ রানের একটি ইনিংস খেলেন। ২০০৪ সালে ভারতের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ভারত ও পাকিস্তান কলকাতায় একটি ম্যাচ খেলে। ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশের রজত জয়ন্তী অর্থাৎ ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ইন্ডিপেন্ডেন্স কাপ আয়োজিত হয়েছিল যেখানে পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশ খেলেছে। উল্লেখ্য ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে পাকিস্তানি ক্রিকেটার নিষিদ্ধ হয়েছে প্রায় এক দশক আগে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশীর বক্তব্যের জের ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের একজন মুখপাত্র জালাল ইউনুসের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, এখানে ভারতের কোনো চাপ আছে কি নেই। বিসিবির মিডিয়া বিভাগের এই প্রধান বিবিসি বাংলাকে বলেন, "এনিয়ে আমাদের কোনোই বক্তব্য নেই। এটা তাদের মতামত, এখানে আমরা কী বলবো। আমি মনে করি আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে আমরাই যথেষ্ট। সরকার ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড পাকিস্তানে নিরাপত্তা নিয়ে সফর করেছে। এটা বাংলাদেশ সরকার থেকেই বলা হয়েছে শুধু টি-টোয়েন্টি খেলতে দল পাঠানো হবে।" পাকিস্তানে দশ বছর পর টেস্ট ক্রিকেট ফিরেছে ভারতের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিসিসিআইয়ের কাছেও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে মন্তব্য চাওয়া হয় ইমেইলের মাধ্যমে কিন্তু সেই ইমেইলের কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। এখানে পাকিস্তানে টি-টোয়েন্টি খেলতে পারলে টেস্ট খেলতে সমস্যা কোথায় এমন একটি প্রশ্ন থেকে যায়। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজামুদ্দিন চৌধুরী বলেন, "নিরাপত্তা নিয়ে যারা কাজ করছেন তারা বোঝেন যে অল্প সময় থাকা ও বেশি সময় থাকার মধ্যে অবশ্যই পার্থক্য রয়েছে। আমরা টি-টোয়েন্টি খেলতে রাজি হয়েছি, এটা পাকিস্তানের মাটিতে ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।" পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড আমাদের এই প্রস্তাব যদি গ্রহণ করে সেটা পাকিস্তানের মাটিতে ক্রিকেট ফেরানোর যে প্রক্রিয়া সেখানে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন মি: চৌধুরী। পাকিস্তানের মাটিতে টেস্ট খেলা নিয়ে জলঘোলা চলছে প্রায় ১৫ দিন ধরেই। এর মধ্যে দুই পক্ষের মধ্যে গণমাধ্যমে বক্তব্যে একটা অনড় অবস্থান লক্ষ্য করা গিয়েছে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি এহসান মানি বলছেন, পাকিস্তানের কোনো খেলা পাকিস্তানের বাইরে হবে না। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড থেকে জানানো হয়েছে, টি-টোয়েন্টি খেলাটা হোক, টেস্টের ব্যাপারটা এখন নয় পরে দেখা যাবে। ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট দলের বাসে একটি হামলা হয়েছিল বাংলাদেশ সরকারের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, "বাংলাদেশ সরকার এখানে সিদ্ধান্ত নেবে। নিউজিল্যান্ডে একটা ঘটনা প্রায় ঘটে গিয়েছিল। এখন কোনো ধরণের ঝুঁকিই নেয়া যাবে না। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সিদ্ধান্ত এখানে মুখ্য নয়, সরকার থেকে যে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে সেটাই হবে।" জালাল ইউনুস আজ বিবিসি বাংলাকে আবারো পাকিস্তান সফর নিয়ে নিজেদের অনড় অবস্থানের কথা জানান, "আমরা শুধু টি-টোয়েন্টিই খেলবো, এটায় যদি তারা রাজি না হয় সেটা একান্ত তাদের ব্যাপার।" বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ক্রিকেট অপারেশন্স প্রধান আকরাম খান বলেন, এতো কড়া নিরাপত্তার মধ্যে এক মাস থাকলে মানসিকভাবে সেটার নেতিবাচক প্রভাব থাকবে। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট দল পাকিস্তানের মাটিতে দুই দফা সফর করে, যেখানে ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার দশজন ক্রিকেটার নিজেদের নাম সরিয়ে নিলেও টেস্ট ক্রিকেটে পুরো দল খেলেছে দুটি ম্যাচ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ২০১৯ সালে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দল ও অনুর্ধ্ব ১৬ ক্রিকেট দলকে পাকিস্তানে সিরিজ খেলতে পাঠিয়েছে। বিবিসি বাংলায় আরো কিছু সংবাদ যা আপনি পড়তে পারেন: অ্যামাজনকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন মুকেশ আম্বানি মাদক নিয়ন্ত্রণে এখন কেন হটলাইন চালু হলো? 'সোয়াইন ফ্লু' নিয়��� কি উদ্বেগের কারণ আছে? বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পাকিস্তান পুরো সফর করার ইচ্ছা আছে কিন্তু ভারতের জন্য পারছেনা, এমন একটি মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশী। +text: চাঁদ দেখা গেছে, বুধবারই ঈদ বাংলাদেশে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির দ্বিতীয় একটি বৈঠক শেষে বাংলাদেশ সময় রাত সোয়া এগারোটার দিকে সংবাদমাধ্যমকে একথা জানিয়েছেন। তিনি জানান, উত্তরবঙ্গের লালমনির হাট এবং কুড়িগ্রাম থেকে স্থানীয় লোকেরা চাঁদ দেখতে পেয়েছেন বলে কমিটিকে খবর দিয়েছেন। এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি প্রথম বৈঠকের পর বলেছিল - বাংলাদেশের কোথাও চাঁদ দেখা যায় নি, তাই বৃহস্পতিবার ঈদ পালিত হবে। তবে এর কয়েক ঘন্টা পর কমিটি আরেকটি বৈঠকে বসে। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোঃ আব্দুল্লাহর সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে উত্তরবঙ্গে চাঁদ দেখা যাবার খবর নিয়ে আলোচনা হয়। মূল চাঁদ দেখা কমিটির সাথে একযোগে প্রতিটি জেলায় একটি করে কমিটি কাজ করে। দেশের কোথাও চাঁদ দেখা গেলে সেটি স্থানীয় প্রশাসন বা ইসলামিক ফাউন্ডেশন সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে জেলা কমিটির কাছে পৌঁছায়। আরো পড়ুন: চাঁদ দেখার বিষয়টি চূড়ান্ত হয় কীভাবে? ঈদ: তারিখ জানতে বিজ্ঞানের দ্বারস্থ হতে সমস্যা কোথায় কোন দেশে কিভাবে নির্ধারিত হয় ঈদের দিন মুসলিম বিশ্বে ঈদুল ফিতরের দিনে জনপ্রিয় কিছু খাবার পরে জেলা প্রশাসন দ্রুত সেটি নিশ্চিত করে বিভিন্ন ভাবে- যেমন স্থানীয় অনেকে চাঁদ দেখেছে কি-না কিংবা স্থিরচিত্র বা ভিডিও চিত্র এসব দ্রুত সংগ্রহ করে নিশ্চিত হয়ে থাকে স্থানীয় প্রশাসন। সেক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য ও ভালো দৃষ্টি শক্তিসম্পন্ন কাউকে চাঁদ দেখতে হবে। পরে সে খবরটি যাচাই হয়ে জেলা কমিটি হয়ে কেন্দ্রীয় চাঁদ দেখা কমিটির হাতে পৌঁছায়। একই সাথে আবহাওয়া অধিদফতরের দেশজুড়ে যে ৭৪টি স্টেশন আছে সেখান থেকেও তথ্য নেয় চাঁদ দেখা কমিটি। যদি আবহাওয়া অনুকূল না থাকে অর্থাৎ খালি চোখে চাঁদ দেখার সুযোগ না থাকলে আবহাওয়া স্টেশন থেকে পাওয়া তথ্যও চাঁদ দেশের আকাশে উঠেছে কি-না তা নিশ্চিত হতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: কী ধরণের পুরুষ পছন্দ বাংলাদেশের মেয়েদের? মাঝরাতে রান্নাঘরের মেঝেতে কুমির দেখলেন যে নারী দুর্নীতির বিরুদ্ধে ���েভাবে লড়াই করছে কেনিয়া ট্রাম্প আর সাদিক খানের মধ্যে এই বাকযুদ্ধ কেন? বাংলাদেশে শাওয়ালের চাঁদ দেখা গেছে, এবং এর ফলে বুধবারই ঈদুল ফিতর পালিত হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। +text: ২৫শে অগাস্টকে রোহিঙ্গা গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে কক্সবাজারে সমাবেশ আয়োজন করেছিল রোহিঙ্গারা গতবছর থেকে এই দিনটিকে তারা রোহিঙ্গা গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। দুই বছর আগের এই দিনটিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচার থেকে বাঁচতে একদিনেই প্রায় লাখখানেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিল। এই সমাবেশে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে যারা নিহত ও নির্যাতিত হয়েছেন তাদের জন্য বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। সেখান থেকে বিবিসির সংবাদদাতা আকবর হোসেন জানাচ্ছেন, এই সমাবেশে কুড়ি হাজারের মত জনসমাগম ঘটেছিল। আরো পড়তে পারেন: রোহিঙ্গা: সঙ্কট বাড়ছে, কমছে শরণার্থীদের জন্য অর্থ 'সুখে খুব বেশিদিন থাকবে না' রোহিঙ্গারা বার্মিজ মিডিয়ায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চেষ্টা রোহিঙ্গারা কি আদৌ ফিরবে? উদ্বিগ্ন স্থানীয়রা সমাবেশে আয়োজিত প্রায় বিশ হাজারের বেশি মানুষের জন্য বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় রোহিঙ্গারা যেন নিজেদের দেশে ফিরে যেতে পারে সেই বিষয়টির ওপরও গুরুত্ব দেয়া হয়। সমাবেশে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে সকাল থেকেই কুতুপালং ক্যাম্পের এক্সটেনশন ফোর ক্যাম্পে হাজার হাজার রোহিঙ্গা পাহাড়ের পাদদেশে জড় হতে থাকে। রোহিঙ্গাদের এই সমাবেশকে ঘিরে এলাকায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছিল। সমাবেশে অংশগ্রনকারী রোহিঙ্গাদের একজন, মোহাম্মদ সেলিম, বিবিসি বাংলাকে বলেন যে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্যই এই দিনে সমাবেশ করে থাকেন তারা। সমাবেশে অনেক রোহিঙ্গাই একটি টি-শার্ট পরে এসেছেন, যেখানে লেখা 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস।' রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার ও মানবাধিকার নিশ্চিতের দাবি পূরণ হলেই কেবল তারা মিয়ানমার ফেরত যাবে বলে জানায় মিয়ানমারের নাগরিকত্বের বিষয়ে যেন রোহিঙ্গাদের সাথে আলোচনা করে মিয়ানমার সরকার এই দাবি তোলা হয় সমাবেশে। সমাবেশে অংশগ্রহণকারী আরেকজন ইয়াসির আরাফাত বিবিসি বাংলাকে বলেছেন যে তারা নিজেদের নাগরিক ও মানবাধিকার নিশ্চিত করার যেসব দাবি তুলেছে সেগুলো পূরণ হলেই কেবল তারা মিয়ানমার ফেরত যাবে। অন্যথা���় তাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা নাই। দোভাষীর সাহায্য ইয়াসির আরাফাত বিবিসিকে বলেন, "দরকার হলে এদেশে আজীবন থাকবো" রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানানো হয় আয়োজিত মোনাজাতে। রোহিঙ্গাদের এই সমাবেশের ভিডিও দেখুন এখানে: ২৫শে অগাস্ট রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পালিয়ে আসার ২ বছর পূর্তির দিনে হাজার হাজার রোহিঙ্গা রবিবার কক্সবাজারের কুতুপালং শিবিরে সমাবেশ করেছে। +text: আশরাফ থামারাসারির ভারতের কেরালার মানুষ, তবে দীর্ঘদিন ধরে বাস করছেন আজমান শহরে তিনিই ওই মৃতদেহ গ্রহণ করেছেন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। আর সেখানেই একটি ফোন নম্বরও দেওয়া হয়েছে সংযুক্ত আরব আমীরাতের আজমান শহরের বাসিন্দা আশরাফ নামের ওই ব্যক্তির। শ্রীদেবীর পরিবারের বদলে তাঁর মৃতদেহ গ্রহণ করলেন কে এই আশরাফ? খোঁজ করে আরও কিছু তথ্য পাওয়া গেল আশরাফ থামারাসারির বিষয়ে। সেই ফোন নম্বরের সূত্র ধরেই বৃহস্পতিবার সকালে যখন ফোন করলাম, প্রথমে লাইন ব্যস্ত। একটু পরে ওই নম্বর থেকেই মিসড্ কল। পরিচয় দিতেই ওদিক থেকে সবিনয়ে জানালেন, "একজন ব্যক্তি মারা গেছেন। তাই নিয়ে পুলিশের কাছে এসেছি। পনেরো মিনিট পরে কথা বলবেন দয়া করে?" ততক্ষণে আরও কিছু খোঁজ খবর করেছি এই আশরাফ থামারাসারির ব্যাপারে। আজমান শহরের বাসিন্দা এই ব্যক্তি আদতে ভারতের কেরালার বাসিন্দা। সংযুক্ত আরব আমীরাতে একটা মোটর গ্যারেজ আছে তাঁর। কিন্তু বিদেশ-বিভূঁইতে থাকা ভারতীয়-বাংলাদেশী কিংবা পাকিস্তানী অথবা নেপালের মানুষের কাছে তিনিই আক্ষরিক অর্থে শেষ আশ্রয় - আশা-ভরসাস্থল। যখনই ওদেশে অবস্থানরত কোনও বিদেশী মারা যান, এই আশরাফ থামারাসারির শরণাপন্ন হন অনেকেই - মরদেহ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে। "সালটা ২০০০। আমি এক বন্ধুকে দেখতে গিয়েছিলাম শারজার এক হাসপাতালে। বেরিয়ে আসার সময়ে দেখি দুজন ভারতীয় কাঁদছে," বলছিলেন আশরাফ থামারাসারি। "ওরা আমার দেশ কেরালার মানুষ। জিজ্ঞাসা করেছিলাম কী হয়েছে। ওরা বলল ওদের বাবা মারা গেছেন। আমি নিজে থেকেই ওদের সঙ্গে অনেক জায়গায় ঘোরাঘুরি করে ওদের বাবার মৃতদেহ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করলাম। সেটাই শুরু।" হৃদরোগে নয় পানিতে ডুবে মারা গেছেন শ্রীদেবী, জানিয়েছে দুবাই পুলিশ চার-পাঁচ দিন লেগে গিয়েছিল সেই মরদেহ কেরালায় পাঠাতে। আর তার কয়েকদিন পরেই খবর পেলেন মি. থামারাসারি যে মৃত্যু হয়েছে এক বাংলাদেশী নাগরিকের। তার দেহও দেশে পাঠাতে এগিয়ে গেলেন তিনি। তারপর গত সতেরো বছরে প্রায় ৪,৭০০টি মৃতদেহ আরব আমিরাত থেকে ফেরত পাঠিয়েছেন মি. থামারাসারি। এর মধ্যে ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল সহ ৮৮টি দেশের নাগরিকদের মৃতদেহ রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে শবদেহ দেশে নিয়ে যাওয়ার জন্যও কেউ থাকেন না। তখনও ভরসা এই আশরাফ থামারাসারি-ই। "আমি গত সপ্তাহেই চেন্নাই গিয়েছিলাম। এর আগে বার চারেক কলকাতায় গেছি। আসামের হোজাই, ওড়িশা - কোথায় না গেছি শবদেহ নিয়ে! বাংলাদেশে অবশ্য এখনও যাইনি। তবে সেদেশের প্রায় সাড়ে ছ'শো নাগরিকের মৃতদেহ দেশে পাঠাতে হয়েছে আমাকে," জানাচ্ছিলেন আশরাফ থামারাসারি। তাঁর কথায়, "এখানে কেউ মারা গেলে যে সব নিয়মকানুনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, সেগুলো অনেকেই জানেন না। সবাই তো এদেশে রোজগার করতে এসেছে। তাই কারও এত দপ্তরে ঘোরাঘুরি করে মৃতদেহ নেওয়া, তারপরে সেটা বিমানে চাপিয়ে দেশে ফেরত নিয়ে যাওয়া এত কিছু করার সময়ও নেই। "এখন তাই কেউ মারা গেলেই লোকে আমাকে খবর দেন। আমি স্বস্তি পাই এটা করে।" এত কিছুর জন্য কারও কাছ থেকে একটা পয়সাও আশরাফ থামারাসারি নেননি কখনও। "এত ঘোরাঘুরি করতে হয় রোজ যে আমি আর গ্যারেজের কাজ দেখতে পারি না। ওটা এক শ্যালককে দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়েছি। মাসে সেখান থেকে যেটুকু পাই, তাতেই সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে আমার পরিবারের চলে যায়। এত মানুষ যে আমার জন্য দোয়া করেন, এটাই আমার সবথেকে বড় প্রাপ্তি," বলছিলেন আশরাফ থামারাসারি। শ্রীদেবীর মৃত্যুর পরে মি. থামারাসারির সঙ্গেই যোগাযোগ করেছিল সেখানকার ভারতীয় দূতাবাস। তাঁর কথায়, "খবর পাওয়ার পর থেকে আমি টানা তিনদিন দুবাইতেই ছিলাম। সেদিন তাঁকে নিয়ে মোট পাঁচ জন মারা গিয়েছিলেন। একজন চেন্নাইয়ের বাসিন্দা, একজন আহমেদাবাদের আর দু'জন কেরালার। সকলের শবদেহের ব্যবস্থাই আমি করেছি।" "তাঁর মুখ দেখে বোঝাই যাচ্ছিল না যে তিনি আর নেই। জীবিত অবস্থায় ঠিক যেরকমটা দেখতে ছিলেন, সেই একই রকম মুখটা ছিল তাঁর," বলিউডের প্রথম নারী সুপারস্টারের প্রসঙ্গে বলছিলেন আশরাফ থামারাসারি। বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারেন: হিজাব খোলার দায়ে ৬০,০০০ ডলার ক্ষতিপূরণ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বিবিসি বাংলার দু'টি রেডিও অনুষ্ঠান 'জওয়ানরা উল্লাস করছিল কে কতজনকে মেরেছে' ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের প্রথম নারী সুপারস্টার শ্রীদেবীর মৃত্যুর কয়েকদিন পরে তাঁর মৃতদেহের যে 'এমবামমেন্ট সার্টিফিকেট' সংবাদমাধ্যমের হাতে আসে, সেখানেই প্রথম নামটা দেখা যায় - আশরাফ। +text: বিশ্বের বেশ কটি দেশে জনসমক্ষে মুখ ঢাকা বোরকা এবং নিকাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার অফিস থেকে এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে - 'জাতীয় নিরাপত্তার' স্বার্থে যে কোনো মুখ ঢাকা কাপড় যা চেহারা সনাক্ত করায় বাধা তৈরি করে তা এখন থেকে নিষিদ্ধ । এই নিষেধাজ্ঞার সমর্থকরা বলছেন, জন-নিরাপত্তার জন্য এটা জরুরী ছিল এবং এর পরে দেশের বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর মধ্যে মেলামেশা বাড়বে। কিন্তু মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞা মুসলিম নারীদের প্রতি বৈষম্য, কারণ অনেক মুসলিম নিকাব ব্যবহারকে ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা মনে করে। নিকাব এবং বোরকা নিয়ে বিশ্বের অনেক দেশেই বিতর্ক রয়েছে। বেশ কটি দেশ নিকাব নিষিদ্ধ করেছে। কোন কোন দেশে নিকাব নিষিদ্ধ? ইউরোপ ফ্রান্স প্রথম কোনো ইউরোপীয় দেশ যেখানে ২০১১ সালে জনসমক্ষে নিকাব পরা নিষিদ্ধ করা হয়। এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হয়। মামলা গড়ায় ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত পর্যন্ত। কিন্তু ২০১৪ সালের জুলাই মানে ইউরোপীয় ঐ আদালতও নিকাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখে। ২১০৮ সালের অগাস্টে একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ডেনমার্ক। এ ব্যাপারে জারী করা এক আইনে বলা হয় - জনসমক্ষে এমন কোনো পোশাক যদি কেউ পরে যাতে তার মুখ পুরোপুরি ঢাকা পড়ে যায় তাহলে ১০০০ ক্রোনা (১৫৭ ডলার) জরিমানা করা হবে। দ্বিতীয়বার এই নিষেধাজ্ঞা ভাঙলে ১০ গুণ বেশি জরিমানা গুনতে হবে। ইউরোপের বেশ কিছু দেশে নিকাব নিষিদ্ধ করা হয়েছে যা নিয়ে মুসলিমরা ছাড়াও মানবাধিকার কর্মীরা প্রতিবাদ করেছে। ডেনমার্কের দুমাস আগে অর্থাৎ ২০১৮ সালের জুন মাসে নেদারল্যান্ডসের সেনেটে একটি আইন পাশ করে সরকারি স্থাপনাগুলোতে (স্কুল, হাসপাতাল, গণপরিবহন) নিকাব নিষিদ্ধ করা হয়। তবে সেদেশে রাস্তায় নিকাব পরা নিষিদ্ধ করা হয়নি। জার্মানিতে গাড়ি চালানোর সময় নিকাব পরা বেআইনি। জার্মানির সংসদে পাশ করা একটি আইনে বিচারক, সরকারি কর্মচারী এবং সেনাবাহিনীতে নিকাব নিষিদ্ধ করা হয়। এছাড়া, পরিচয় সনাক্ত করার প্রয়োজন হলে নিকাব সরানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বেলজিয়ামে ২০১১ সা��ের জুন মাসে পর্দা দিয়ে মুখমণ্ডল পুরোপুরি ঢাকা নিষিদ্ধ করে আইন হয়েছে। পার্ক বা রাস্তায় যে কোনো পোশাক যাতে মানুষের চেহারা ঢাকা পড়তে পারে তা নিষিদ্ধ করা হয়। অস্ট্রিয়ায় স্কুল এবং আদালত সহ অনেক জায়গায় নিকাব নিষিদ্ধ করে ২০১৭ সালের অক্টোবরে ইন করা হয়। নরওয়েতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিকাব নিষিদ্ধ করে আইন হয়েছে। বুলগেরিয়াতে ২০১৬ সালে এক আইনে নিকাব পরার জন্য জরিমানার পাশাপাশি সরকারি কল্যাণ ভাতা কমিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। লুক্সেমবুর্গে হাসপাতাল, আদালত এবং সরকারি অফিস-আদালত সহ কিছু কিছু জায়গায় পুরোপুরি মুখ ঢেকে রাখার ওপর বিধিনিষেধ রয়েছে। ইউরোপের কয়েকটির দেশে আবার কিছু কিছু শহর এবং অঞ্চলে নিকাব নিষিদ্ধ। ইটালির কয়েকটি শহরে এই নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যেমন নোভারায় অভিবাসন বিরোধী দল নর্দার্ন লীগ ক্ষমতা নেওয়ার পর ২০১০ সালে সেখানে নিকাব পরা নিষিদ্ধ করে। স্পেনের বার্সিলোনা শহরে ২০১০ সাল থেকে কিছু কিছু জায়গায় (মিউনিসিপাল অফিসে, বাজারে, লাইব্রেরিতে) নিকাব পরা নিষিদ্ধ। সুইজারল্যান্ডে কিছু অঞ্চলেও জনসমক্ষে নিকাব পরা নিষিদ্ধ। ভিয়েনায় জনসমক্ষে বোরকা পরার ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে বিক্ষোভ আফ্রিকা শাদ, গ্যাবন, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র,ক্যামেরুনের উত্তরাঞ্চলে এবং নিজেরের ডিফা অঞ্চলে জনসমক্ষে নিকাব নিষিদ্ধ। ২০১৫ সালে আফ্রিকার ঐ অঞ্চলে নিকাব পরিহিত নারীরা পর পর কয়েকটি আত্মঘাতী হামলা চালানোর পর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। আলজেরিয়ায় ২০১৮ সালের অক্টোবর মাস থেকে সরকারি কর্মচারীদের নিকাব পরা নিষিদ্ধ করা হয়। চীন চীনের উইগুর মুসলিম অধ্যুষিত শিনজিয়াং প্রদেশে জনসমক্ষে নিকাব এবং লম্বা দাড়ি রাখা নিষিদ্ধ। ইস্টার সানডের দিনে আত্মঘাতী হামলায় ২৫০ জনেরও বেশি লোকের মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর শ্রীলংকা সোমবার পুরো মুখ ঢেকে বাইরে বেরুনোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। +text: বাংলাদেশ ব্যাংকে সাইবার চুরির দায়ে ফিলিপিন্সের সাবেক ব্যাংক ব্যবস্থাপক মাইয়া দেগুইতোকে ৩২ থেকে ৫৬ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। বৃহস্পতিবার ফিলিপিন্সের আদালত সাবেক ওই ব্যাংক ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের ৮টি অভিযোগের সবক'টিতে দোষী সাব্যস্ত করে, খবর রয়টার্সের। বিশ্বের অন্যতম এই সাইবার জালিয়াতির ঘটনায় ��ই প্রথম কাউকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দেয়া হল। প্রায় তিন বছর আগে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি যায়। সেই অর্থচুরিতে সম্পৃক্ততার দায় প্রমাণ হওয়ায় ম্যানিলা-ভিত্তিক রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশন (আরসিবিসি) এর প্রাক্তন শাখা ব্যবস্থাপক মাইয়া দিগুইতোকে কারাদণ্ড ও জরিমানা করে ফিলিপিন্সের আঞ্চলিক আদালত। মানি লন্ডারিংয়ের প্রতিটি অভিযোগে তাকে চার থেকে সাত বছর করে জেল দেয়া হয়েছে। আরো পড়ুন: বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি হওয়া অর্থ ফিরে আসবে কবে? রিজার্ভ চুরি: কেন জড়িতরা চিহ্নিত হচ্ছে না? 'রিজার্ভ চুরির হোতারা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভেতরে আছে' কিভাবে চুরি যায় এই অর্থ? ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অজ্ঞাতরা সুইফট পেমেন্ট পদ্ধতিতে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে (ফেড) রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ওই বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়। পরে ওই অর্থ ম্যানিলার আরসিবিসি শাখার অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। ওই শাখার প্রধান হিসেবেই দায়িত্ব পালন করতেন দেগুইতো। পরে সেই অর্থ ফিলিপিন্সের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ফিলরেমের মাধ্যমে দেশটির তিনটি কাসিনোতে যায়। তারপর থেকে সেই অর্থের কোন হদিশ পাওয়া যায়নি। দেগুইতো এই অবৈধ ব্যাংক লেনদেন সহজে বাস্তবায়ন ও সমন্বয়ের জড়িত ছিল বলে দাবি আদালতের। তবে আদালতের সামনে মিস দেগুইতো জানিয়েছেন, এই অর্থ লেনদেনের পেছনে তার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ওই বিপুল পরিমাণ অর্থ চুরি যায়। বাংলাদেশে এই মামলার অগ্রগতি কতোটা? এই রিচার্ভ চুরির বিষয়ে বাংলাদেশের সিআইডি ইতোমধ্যে একটি মামলা নিয়েছে এবং সিআইডি এ সংক্রান্ত তদন্ত শুরু করে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম। এই অবৈধ অর্থ পাচার প্রতিরোধে ব্যর্থতার কারণে ২০১৬ সালের অগাস্টে আরসিবিসিকে রেকর্ড পরিমাণ প্রায় ১শ কোটি পেসো অর্থাৎ ১ কোটি ৯১ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা করে ফিলিপিন্সের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আরসিবিসি'র সাবেক কোষাধ্যক্ষ এবং যে শাখাটি থেকে অর্থ উত্তোলন করা হয়েছিল সেখানকার পাঁচজন কর্মকর্তার বিরু���্ধেও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ বিষয়ে ফিলিপিন্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসাদ আলম সিয়াম রয়টার্সকে বলেন, "আমরা আশা করি শিগগিরই একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে এই মামলাটি দ্রুত বিচারের মুখোমুখি হবে।" বাংলাদেশ ব্যাংক। এরইমধ্যে ম্যানিলা জাঙ্কেট অপারেটর থেকে চুরি করা অর্থের মাত্র দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাকি অর্থ পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়ার জন্য আলোচনা করতে বাংলাদেশ ব্যাংক সেইসঙ্গে , অর্থ ও আইন মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তারা এই মুহুর্তে নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছেন সিরাজুল ইসলাম। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, "এই মাসের মধ্যেই মামলা দায়ের করার কথা রয়েছে। সেজন্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন সচিব, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিটের প্রধানসহ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছেন। সেখানে তারা এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে মামলা করবেন বলে জানান তিনি। মামলা করার পর বাংলাদেশ ব্যাংক তার সমস্ত অর্থ ফেরত পাবে বলে তিনি আশাবাদী। তবে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কবে নাগাদ পুনরুদ্ধার হতে পারে সে বিষয়ে তিনি স্পষ্ট করে কিছু জানাতে পারেননি। মিস্টার ইসলাম বলেন, "মূলত অর্থ উদ্ধারের লক্ষ্যেই এই মামলা করা হচ্ছে। মামলার রায় ঘোষণার পরই অর্থ উদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে। রায় কবে ঘোষণা হতে পারে সেটা তো বলা যায়না। তবে চলতি মাসের মধ্যে নাহলে ফেব্রুয়ারির মধ্যেই মামলা করার সময় চূড়ান্ত করা হয়েছে। " সেখানে এই অর্থ চুরির পেছনে জড়িত পক্ষগুলোর বিরুদ্ধে মামলা করার বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দেগুইতো এই অবৈধ ব্যাংক লেনদেন সহজে বাস্তবায়ন ও সমন্বয়ের জড়িত ছিল বলে দাবি আদালতের। দেগুইতোর আইনজীবীরা কি বলছেন? আরসিবিসি'র মুখপাত্র থে ডায়েপ এক বিবৃতিতে বলেছেন, দেগুইতোর বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে কারণ তিনি একজন অসৎ কর্মকর্তা ছিলেন এবং এই রায় ব্যাংকে তার যে অবস্থান তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বিবৃতিতে আরও বলা হয় আরসিবিসি ব্যাংক পরিস্থিতির শিকার হয়েছে। তবে দেগুইতো এখন কারাগারে নেই কারণ তিনি জামিন চেয়ে যে আবেদন করেছিলেন সেটা তার বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশ চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছে��� দেগুইতোর একজন আইনজীবী জোয়াকুইন হিজোন। তার অপর আইনজীবী, দেমেত্রিও কাস্টোডিও, রয়টার্সকে বলেন, দেগুইতোর বেকসুর খালাসের জন্য তারা বৃহস্পতিবারের এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবেন। এছাড়া নিউজ চ্যানেল এএনসি'র সাথে আলাদা সাক্ষাতকারে কাস্টোডিও বলেন, "এমন অনেক লোক আছে যার এই ঘটনার জন্য দেগুইতোর মতো ব্যাংক কর্মকর্তার চাইতেও বেশি দায়বদ্ধ। কেননা , ব্যাংক পরিচালনার এই বিষয়টিতে তার কিছু করার নেই।" বাংলাদেশ ব্যাংকে সাইবার চুরির দায়ে ফিলিপিন্সের সাবেক ব্যাংক ব্যবস্থাপক মাইয়া দেগুইতোকে ৩২ থেকে ৫৬ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। সেইসঙ্গে তাকে ১০ কোটি ৯০ লাখ ডলার জরিমানাও করা হয়। +text: দিল্লির একটি দোকানে ছোট সাইনবোর্ড যে সেখানে শুধু ভারতে তৈরি আতশবাজি বিক্রি হয়, চীনা পণ্য নয়। কয়েকমাস আগে ভারতের হিন্দুত্ববাদী সঙ্ঘ পরিবার প্রথম এই চীনা পণ্য বয়কটের ডাক দেয়, আর গত মাসে কাশ্মীরের উরি-তে জঙ্গী হামলার পর এই বয়কটের ডাক বেশ জনপ্রিয় হয়েছে।কারণ ভারতীয়দের একাংশ মনে করছেন চীন যেভাবে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে তাতে চীনা পণ্য বয়কট করাই তাদের শাস্তি দেওয়ার একমাত্র পথ। ভারত সরকার অবশ্য এই বয়কটের ডাককে প্রকাশ্যে সমর্থন করেনি - আর ভারতের বিশেষজ্ঞরাও বলছেন এটা বলা যত সহজ করা আদৌ ততটা সহজ নয়। রাজধানী দিল্লির সদর বাজারের দোকানি সুনীল আহুজা'র মতে বাজারে উপহারের জন্য চীনা জিনিসপত্রের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। "প্রথম কথা হলো চীনের তৈরি জিনিস সস্তা, দেখতে সুন্দর - দিতেও ভালো লাগে। সদর বাজারের সব ব্যবসায়ীই চীন থেকে জিনিস আনান। আমাদের এখানে যত খদ্দের আসেন চীনা জিনিস কিনে সবার মুখে একটাই কথা - একটা নতুন কিছু পেলাম, আর খুব সস্তায় পেলাম"-বলে দোকানদার সুনীল আহুজা। কিন্তু এখন সেই ক্রেতাদের কারও কারও মুখে অন্য সুরও শোনা যাচ্ছে, তারা চীনা পণ্যের বদলে ভারতে তৈরি দেশি জিনিস দেখাতে বলছেন। সোশ্যাল মিডিয়া বা হোয়াটসঅ্যাপেও চলছে ভারতের বাজারে চীনা জিনিস বয়কট করার তুমুল প্রচারণা। আরও পড়ুন: 'শিশুর অঙ্গে যেভাবে আঘাত করা হয়েছে তা চিকিৎসা জীবনে দেখিনি' সারোয়ার জাহানকে নিয়ে র‍্যাবের দাবি নাকচ করলো পুলিশ 'মা ইলিশ রক্ষার জন্য যুদ্ধ চলছে' এ বছরের গোড়ার দিকে শাসক দল বিজেপির আদর্শগত অভিভাবক আরএসএস প্রথম এই ডাক দিয়েছিল, স���্প্রতি বিজেপির ঘনিষ্ঠ সন্ন্যাসী ও ৫০০০ কোটি রুপির দেশি শিল্পগোষ্ঠী পতঞ্জলির কর্ণধার বাবা রামদেবও একই আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, "চীন যেভাবে ভারতের একতা ও অখন্ডতা বিপন্ন করার ঘৃণ্য খেলায় মেতেছে তাতে সব ভারতবাসীর উচিত তাদের জিনিস বর্জন করা। আমাদের ঘরে হনুমানজি-রামচন্দ্র-গণেশজির মূর্তিও এখন চীনে তৈরি হয়ে আসে, দিওয়ালির আলোকসজ্জাও চীনই তৈরি করে। এসব জিনিস কেনা বন্ধ করলে তবেই একমাত্র চীনকে বাগে আনা যাবে"। ভারতে দিওয়ালি উৎসবের সময় অনেকেই চীনা পণ্য কিনে থাকেন। ভারতে ব্যবসায়ীদের বৃহত্তম সংগঠন কনফেডারেশনস অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্সও বলছে উরি-তে জঙ্গী হামলার পর ভারতে পাকিস্তান ও সেই সঙ্গে চীনের প্রতি বিদ্বেষ যেভাবে বেড়েছে তাতে দিওয়ালিতে চীনা জিনিস গতবারের তুলনায় অন্তত ৩০ শতাংশ কম বিক্রি হবে বলে তারা ধারণা করছেন। তবে চীনা জিনিস কম বিক্রি হলেও আক্ষেপ নেই সমিতির প্রেসিডেন্ট প্রভিন খান্ডেলওয়ালের। তাঁর বক্তব্য, "উরিতে যেভাবে পাকিস্তান হামলা চালিয়েছে তা ভারতের দেশভক্তদের সরাসরি আঘাত করেছে। আর চীন সেই পাকিস্তানকে সমর্থন করছে।" "সেই ভাবনা থেকেই কিন্তু এই ক্যাম্পেনের জন্ম যে যে সব দেশ ভারতের ভাল চায় না তাদেরকে এবার উচিত শিক্ষা দেওয়ার সময় এসেছে", বলছেন ব্যবসায়ী সংগঠনের এই নেতা। আধুনিক প্রজন্মের ক্রেতাদের মধ্যেও এমন ভাবনা রয়েছে। দিল্লির অভিজাত কনট প্লেসে এক তরুণী বলছিলেন, "অন্য দেশে তৈরি জিনিস কিনে আমরা তাদের জিডিপি বাড়াতে সাহায্য করি। যারা পাকিস্তানকে সমর্থন করে তাদের তৈরি জিনিস কিনে আমরা কেমন দেশপ্রেম দেখাচ্ছি?" ভারতের বিভিন্ন দোকানে চীনা পণ্য বিক্রি হয় এই বয়কটের ডাক ক্রমশ জনপ্রিয় হলেও ভারত সরকার এর সমর্থনে বা বিরোধিতায় এখনও প্রকাশ্যে মুখ খোলেনি। তবে বিশ্লেষক ভারত ভূষণ বিবিসিকে বলছিলেন চীনা জিনিস বর্জন কিছুতেই সরকারি নীতি হতে পারে না। মি: ভূষণের মতে, "এটা অত্যন্ত নির্বুদ্ধিতার কাজ, কারণ এই ধরনের বয়কট মানা সম্ভবই নয়। আর চীন যদি আমাদের পাল্টা একই ধরনের পদক্ষেপ নেয় তাতে ক্ষতি আমাদেরই - কারণ তারা ভারত থেকে যে সব জিনিস আমদানি করে সেগুলো অন্য দেশ থেকেও নিতে পারে"। "আমাদের সরকার ভুলক্রমেও যদি বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয়, তাতে চীন অবশ্যই ভারতকে ডব্লিউটিও-তে টেনে নিয়ে যাবে যেখানে আমাদের হার অবধারিত", ��তর্ক করে দিয়েছেন ভারত ভূষণ। ফলে বয়কটের ডাক দেওয়াটা যত সহজ - বাজারে সেটা প্রয়োগ করা শেষ পর্যন্ত হয়তো তত সহজ নয়। তবে তারপরও দীপাবলীর মৌসুমে অনেক ভারতীয় চীনা জিনিস কেনা থেকে বিরত থাকছেন - কারণ তারা মনে করছেন দেশপ্রেমীদের এমনই করা উচিত। ভারতের বাজারে যাতে চীনের তৈরি পণ্য বয়কট করা শুরু হয়, সে জন্য ক্রমশই আন্দোলন জোরালো হচ্ছে। +text: থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ছেত্রির করা প্রথম গোলটি এসেছিল পেনাল্টি থেকে কীভাবে? ভিন গ্রহের খেলোয়াড় বলে আখ্যা দেয়া লিওনেল মেসিকে তিনি গোলের রেকর্ডে ছাড়িয়ে গেছেন। এই মূহুর্তে সক্রিয় আন্তর্জাতিক খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ গোলদাতা ক্রিষ্টিয়ানো রোনালদোর পরেই তার স্থান, ইতিমধ্যেই পেছনে ফেলে দিয়েছেন মেসিকে। ইতিমধ্যেই ১০৫টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে তিনি ৬৭টি গোল করেছেন। মেসির গোল সংখ্যা ৬৫টি। সংযুক্ত আরব আমিরাতে এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে বড় জয় পায় ভারত। এশিয়ার কাপে ৫৫ বছরের মধ্যে প্রথম কোন ফুটবল ম্যাচ জিতলো ভারত, সুনীল ছেত্রির কল্যানে। এই ম্যাচে করা দুটি গোলের মাধ্যমেই মূলত তিনি মেসির রেকর্ডটি ছাড়িয়ে যান। বস্তুত এই ম্যাচের পরই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছেত্রিকে নিয়ে কৌতুহল ও আগ্রহ জাগতে শুরু করে। তবে শীর্ষস্থানে রয়েছেন পর্তুগীজ সুপারস্টার রোনালদো, ১৫৪ ম্যাচে যিনি ৮৫টি গোল করেছেন। শুধু এই রেকর্ডই নয়, ছেত্রি ঢুকে পড়েছেন সর্বকালের সেরাদের দলেও, যেখানে তিনি দিয়ের দ্রগবা, রোনালদো (ব্রাজিল) এবং য্লাতান ইব্রাহিমোভিচকে ছাড়িয়ে গেছেন। কিন্তু কে এই ছেত্রি? ভারতের বেঙ্গালুরুর যে ক্লাবে ছেত্রি খেলেন, সেখানে সবাই তাকে ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাস্টিক বলে ডাকেন। এতদিন পর্যন্ত ভারতের জাতীয় দলেই খেলেছেন ৩৪ বছর বয়েসী ছেত্রি, কদর যেটুকু পাবার তাও ওখানেই সীমাবদ্ধ। ২০০৫ সালে তিনি প্রথম আন্তর্জাতিক গোল করেন। সেটাও ছিল ঐতিহাসিক এক ঘটনা, কারণ তার গোলটি দিয়েই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার কোন ফুটবল ম্যাচে প্রথম গোলের খাতা খুলেছিল ভারত। ২০০৫ সালের আগ পর্যন্ত দুই প্রতিবেশী দেশ পরস্পরের সঙ্গে কোন ফুটবল ম্যাচ খেলেনি। তবে সেই ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল। ক্রমে ছেত্রি হয়ে ওঠেন ভারতীয় জাতীয় ফুটবল দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড়। সাম্প্রতিক সময়ের যেকোন আন্তর্জাত���ক ম্যাচে ছেত্রির পারফর্ম্যান্সই সবচেয়ে ভালো ও ধারাবাহিক। ২০০৯ সালে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে ছেত্রি চার গোল করেছিলেন। এখন পর্যন্ত ১০৫টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ম্যাচ প্রতি ছেত্রির গড় গোল ০.৬৩টি। ঘরোয়া ফুটবলে ছেত্রির গড় একটু কম অবশ্য। তবে, ভারতীয় ফুটবল থেকে কিছুদিন তিনি বাইরেও ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের কানসাস সিটি উইজার্ড এবং স্পোর্টিং লিসবন এও কিছুকাল খেলেছেন তিনি। তবে, সেসব ক্লাবে সাফল্য তেমন পাননি। স্পোর্টিং লিসবনের হয়ে ছেত্রি মাত্র তিনটি ম্যাচ খেলেছেন ছেত্রি ভারতের অল্প সংখ্যক ধারাবাহিক সাফল্যের মুখ দেখা খেলোয়াড়। সঙ্গে দুই বছরের চুক্তি থাকলেও ২০১৮ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত ইন্টারকন্টিনেনটাল কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ভারত চাইনিজ তাইপেকে ৫-০ গোলে জেতে, যেখানে ছেত্রি হ্যাট্রিক করেন। মাঠ থেকে ভক্তদের খেলা দেখতে আসতে অনুরোধ জানিয়ে করা ছেত্রির একটি ভিডিও সেসময় ভাইরাল হয়। টুইটারে পোস্ট করেছিলেন তিনি ভিডিওটি। পরে সেটি শচীন টেন্ডুলকার এবং ভিরাট কোহলির মত তারকারাও রিটুইট করেন, আর ফল হিসেবে পরের দুই ম্যাচে মাঠে দর্শকের সংখ্যা বহুগুন হয়ে গিয়েছিল। ভারতের সুনীল ছেত্রি ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলের রেকর্ড বই এ ইতিমধ্যেই নাম লিখিয়েছেন। +text: বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তার জন্য সেনাবাহিনী মাঠে নামে। ফাইল ফটো কক্সবাজারের কতটুকু এলাকায় যৌথ টহল হবে সে সম্পর্কেও কোন ধারণা দিতে পারছেন না মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। যৌথ টহলের বিষয়ে বৃহস্পতিবার আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর বা আইএসপিআর'র এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। আইএসপিআর-এর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে এবং এলাকার মানুষের মাঝে 'আস্থা ফিরিয়ে আনতে' সে এলাকায় যৌথ টহল পরিচালনা করা হবে। বাংলাদেশে অতীতে বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনার সময় 'যৌথ বাহিনীর' ব্যানারে কাজ করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়া বাংলাদেশের অন্য এলাকায় স্বাভাবিক সময়ে সেনাবাহিনী এবং পুলিশের সমন্বয়ে যৌথ টহল দেখা যায়নি। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, কক্সবাজারে কেন যৌথ টহলের প্রয়োজন হচ্ছে? পুলিশের রাশ টেনে ধরা? বিভিন্ন কারণে গত কয়েক বছরে কক্সবাজার বাংলাদেশের জন্য একটি স্পর্শকাতর এলাকা হয়ে উঠেছে। মাদক এবং মানবপাচারের রুট এবং রোহিঙ্গা সংকটের কারণে কক্সবাজার এলাকা নিয়ে বাংলাদেশের সরকারের দুশ্চিন্তাও বেড়েছে। গত দুই বছরে কক্সবাজার এলাকায় মাদক নির্মূল অভিযানে তথাকথিত ক্রসফায়ারের নামে বহু হত্যাকাণ্ড হয়েছে সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে। গণমাধ্যমে ফাঁস হওয়া ডিজিএফআই'র সে রিপোর্ট দেখা যায়, পুলিশের প্রতি এক ধরণের ক্ষোভ রয়েছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন পুলিশের গুলিতে নিহত সিনহা রাশেদের সাথে থাকা শিক্ষার্থীরা কে কোথায়? সিনহা রাশেদ নিহতের ঘটনায় পুলিশ ও ডিজিএফআই’র পরস্পরবিরোধী ভাষ্য বন্দুকযুদ্ধ নিয়ে পুলিশের ভাষ্যই বিশ্বাস করবে মিডিয়া? বৈরুত বিস্ফোরণের কারণ এ্যামোনিয়াম নাইট্রেট কী জিনিস? এমন অবস্থায় সেনা কর্মকর্তাদের অনেকেই মনে করেন, পুলিশ যাতে একচ্ছত্রভাবে সবকিছু করতে না পারে সেজন্য সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে যৌথ টহলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বছর তিনেক আগে রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর থেকে কক্সবাজার এলাকায় সামরিক বাহিনীর তৎপরতা বেড়েছে। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার সেখানে সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে। কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত আসা-যাওয়ার রাস্তাগুলোতে পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং বিজিবির আলাদা-আলাদা চেকপোস্টও রয়েছে। কক্সবাজারে বেসামরিক প্রশাসনের অনেকেই মনে করেন, কর্তৃত্ব বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে এক ধরণের ঠাণ্ডা প্রতিযোগিতা চলছে। সেনাবাহিনীর বর্তমান এবং সাবেক অনেক কর্মকর্তার মনোভাব হচ্ছে, কক্সবাজারে পুলিশের রাশ টেনে ধরতে হবে। অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মইনুল ইসলাম বলেন, মানব পাচার এবং মাদক নির্মূলের নামে কক্সবাজারে কী হচ্ছে সেদিকে নজর দেয়া দরকার । জেনারেল মইনুল বলেন, "আসলে এখানে সহজ উপায়ে অর্থ উপার্জনের জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সকলেই এখন চাচ্ছে যে এই বাহিনীটাকে জবাবদিহিতার মধ্যে এনে আরেকটু সুশৃঙ্খল বানানোর জন্য।" যৌথ টহলে কর্তৃত্ব কার? সাবেক বিজিবি প্রধান মইনুল ইসলাম বলেন, কক্সবাজারে কেন যৌথ টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে সেটি তার কাছে পরিষ্কার নয়। তবে বাংলাদেশে সাধারণত যে কোন জায়গায় আইনশৃঙ্খলার কাজে যদি সেনাবাহিনী জড়িত হয় তাহলে কর্তৃত্ব তাদের হাতেই থাকে। "যৌথ বাহিনীর কমান্ড যদি হয়, তাহলে কমান্ড অবশ্যই থাকতে হবে সেনাবাহিনীর হাতে। এখানে অন্য কোন বিবেচনা হয়না।" লেফট্যানেন্ট জেনারেল (অব.) মইনুল ইসলাম পার্বত্য চট্টগ্রামের উদাহরণ বাংলাদেশে সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় কাজ করেছে। এছাড়া তারা সেখানে কাউন্টার-ইনসারজেন্সির কাজ করেছে। সে উদাহরণ টেনে জেনারেল মইনুল বলেন, "তখন আমাদের অধীনে অনেক ক্যাম্প ছিল। তারা সবাই পার্বত্য চট্টগ্রামের রিজিওন কমান্ডারের অধীনে কাজ করেছে।" সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মোহামদ রাশেদ খান পুলিশের গুলিতে নিহত হবার পর সেনাবাহিনীর অনেকের মাঝেই তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। পুলিশ বাহিনী দৃশ্যত চাপের মুখে পড়েছে। যৌথ টহল বিষয়ে পুলিশের কোন পর্যায়ে থেকে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এই ঘটনার পর পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর মধ্যকার সম্পর্কে এক ধরণের অস্বস্তিও তৈরি হয়েছিল। যদিও দুই বাহিনীর প্রধান আশ্বস্ত করেছেন যে এর ফলে সম্পর্কে কোন চিড় ধরবে না। কারো কারো মনে এমন প্রশ্নও তৈরি হয়েছে যে আইনশৃঙ্খলার দৃষ্টিকোণ থেকে কক্সবাজারে কোন জরুরী পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তাহলে টহলে কেন সেনা সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে? সাবেক পুলিশ প্রধান মুহাম্মদ নুরুল হুদা মনে করেন, সাম্প্রতিক ঘটনাটির একটি ভিন্ন মাত্রা রয়েছে। সে প্রেক্ষাপটে যৌথ টহলের প্রয়োজন রয়েছে। সাবেক পুলিশ প্রধান মুহাম্মদ নুরুল হুদা "মহল বিশেষ এ পরিস্থিতিকে উদ্দেশ্যমূলক-ভাবে ব্যবহার করতে পারে। সে ধরনের পরিস্থিতির যাতে উদ্ভব না হয়, বাহিনীগুলোর মধ্যে যাতে সদ্ভাব বজায় থাকে সেজন্যই এটার প্রয়োজন আছে," বলেন মি. হুদা। অবসরপ্রাপ্ত মেজর খানের মৃত্যুর ঘটনা প্রসেঙ্গে পুলিশের দিক থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে এটাই শেষ ঘটনা। এ ধরণের ঘটনা ভবিষ্যতে আর ঘটবে না। আইএসপিআরের বিবৃতিতে এমনটাই জানানো হয়েছে। কিন্তু সে এলাকায় তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধ চলমান থাকবে কিনা সে প্রসঙ্গে অবশ্য কিছু বলা হয়নি। বাংলাদেশের কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভে পুলিশের গুলিতে সাবেক এক সেনা কর্মকর্তা নিহতের প্রেক্ষাপটে সেখানে পুলিশ এবং সেনা সদস্যদের সমন্বয়ে যৌথ টহল পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কিন্তু সেটা কীভাবে পরিচালিত হবে তা পরিষ্কার নয়। +text: বাংলাদেশে প্রতিমাসে ৫০লাখ ডোজ করে টিকা আসার কথা থাকলেও গত দুই মাসে কোন চালান আসেনি। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সাথে চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতিমাসে ৫০লাখ ডোজ করে টিকা আসার কথা থাকলেও গত দুই মাসে কোন চালান আসেনি। কবে নাগাদ টিকার চালান আসতে পারে, তা কেউ বলতে পারছে না। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আগে থেকেই বিকল্প না রেখে একটি প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল থাকার কারণে বাংলাদেশের টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, এখন রাশিয়া এবং চীনসহ বিকল্প সব জায়গা থেকে টিকা আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। আরও পড়ুন: করোনায় প্রথম বারের মতো একদিনে ১০০'র বেশি মৃত্যু বাংলাদেশে 'একটি আইসিইউ বেড পেতে অন্তত ৫০টা হাসপাতালে খোঁজা হয়েছে' হাসপাতালে বেড বসানোর এক ইঞ্চি জায়গাও নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী চুক্তির পর ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে দু'টি চালানে ৭০ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশ পেয়েছে গত জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে। এছাড়া ভারত সরকারের উপহার হিসাবে দিয়েছে ৩২ লাখ ডোজ। সবমিলিয়ে বাংলাদেশের হাতে এসেছিল এক কোটি দুই লাখ ডোজ। কিন্তু প্রথম ডোজের টিকা যে সংখ্যক মানুষ নিয়েছেন, তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার ক্ষেত্রে এখন প্রায় দশ লাখ ডোজ টিকার ঘাটতি রয়েছে, যা সরকারি হিসাবেই পাওয়া যাচ্ছে। এখন সিরাম ইনস্টিটিউট আবার কবে টিকা সরবারহ করবে, তার কোন নিশ্চয়তা বাংলাদেশ পাচ্ছে না। অধ্যাপক আবুল বাসার মো: খুরশিদ আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মো: খুরশিদ আলমও বলেছেন, এখন সিরামের সাথে যোগাযোগ রাখার পাশাপাশি বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে রাশিয়া এবং চীন থেকে টিকা আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। "টিকার ঘাটতি থাকছেই। হিসাবে তাই বলে। আমরা বার বার বলছি, তাগাদা দিয়েছি। এর মধ্যে আমরা আমাদের অধিদপ্তর এবং মন্ত্রণালয় দুই দুই বার তাকে (সিরামকে) চিঠিও দিয়েছি। তারাও প্রত্যেকবার বলছে যে এটা অসুবিধ হবে না," বলেন তিনি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মো: খুরশিদ আলম আরও বলেছেন, "আমরা যদি এখান থেকে না পাই তাহলে আমাদের অন্যত্র খুঁজতে হবে এবং আমরা তা শুরু করে দিয়েছে। আমরা রাশিয়া এবং চীনের সাথে যোগাযোগ করেছি।" রাশিয়া এবং চীন থেকে টিকা পাওয়ার নিশ্চয়তা পাওয়া গেছে কিনা-এই প্রশ্ন করা হলে অধ্যাপক আলম বলেন, "এটা প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। তবে রাশিয়া এবং চীন আগ্রহ প্রকাশ করেছে যে তারা দিতে চায়। ইতিমধ্যে আমাদের দুই তিনটা বৈঠকও হয়েছে।" তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব���েছেন, "মুশকিল হচ্ছে, কেউ না করছে না। টিকা দেবে না, একথা কেউ বলছে না। কিন্তু কবে পাওয়া যাবে, সেই নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছে না।" তিনি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফাইজার এবং মডার্নার টিকা আনার ব্যাপারেও যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু তারা এমুহূর্তে তাদের দেশের বাইরে টিকা সরবরাহ করছে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রথম ধাপে বাংলাদেশকে যে এক কোটি ডোজ টিকা দিতে চেয়েছিল, তাও অনিশ্চয়তায় পড়েছে। মহাপরিচালক অধ্যাপক আলম জানিয়েছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও ভারতের সিরামের কাছ থেকে টিকা নিয়ে বাংলাদেশকে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু সিরাম এ মুহূর্তে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকেও টিকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েই চলেছে এদিকে, বাংলাদেশ ভারতে সিরামের সাথে তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার যে চুক্তি করেছিল, সেই চুক্তি হয়েছিল বাংলাদেশের বেসরকারি কোম্পানি বেক্সিমোকোর মাধ্যমে। এখন এই অনিশ্চয়তা নিয়ে বেক্সিমকোর পক্ষ থেকে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এক জায়গার ওপর নির্ভর করার কারণে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সরকার অবশ্য বলছে, বিকল্প বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা আনার জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক একজন পরিচালক ডা: বে-নজীর আহমেদ বলেছেন, টিকা কার্যক্রম ঝুঁকিতে পড়লে সংক্রমণের বিস্তার প্রতিরোধে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা বলেছেন, সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ যখন চলছে, তখন টিকা কার্যক্রম ব্যাহত হলে ঝুঁকি বাড়বে। সিরাম থেকে এ পর্যন্ত অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা যতটা পাওয়া গেছে, সেই টিকাই প্রয়োগ করা হচ্ছে। কিন্তু এই টিকার প্রথম ডোজ যারা নিয়েছেন, তাদের কাউকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া সম্ভব না হলে তার শরীরে টিকা কার্যকর হবে না। এটাকে বড় সমস্যা হিসাবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেছেন, "পুরো ডোজ না দিলেতো টিকা কাজ করবে না। এখনও যারা প্রথম ডোজ নিচ্ছেন, তাদের আট সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ দিতে হবে। একটা সময় পাওয়া যাবে। এই সময়ে টিকা ম্যানেজ করা সম্ভব হবে বলে আমরা মনে করি।" একই সাথে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দ্বিতীয় ��োজ দেয়া নিশ্চিত করতে এই টিকার প্রথম ডোজ দেয়া বন্ধ করা হতে পারে। তিনি বলেছেন, নতুন টিকা এলে তখন আবার প্রথম ডোজ দেয়া যেতে পারে। এমনটা তারা ভাবছেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকা সরবরাহে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় টিকা প্রয়োগের কার্যক্রম ঝুঁকিতে পড়েছে। +text: ৬০০০ আমেরিকানের প্রাতরাশের অভ্যাস নিয়ে এই গবেষণা সম্পন্ন করা হয়েছে। অ্যামেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজি থেকে গত ২২শে এপ্রিল প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ব্রেকফাস্ট বা সকালের নাশতা হতে পারে জীবন-রক্ষাকারী, প্রাতরাশ বাদ দিলে তার ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে। চিকিৎসক এবং বেশ কয়েকটি আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এই গবেষণা ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখেছেন। ছয় হাজার পাঁচশো পঞ্চাশ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি, যাদের বয়স ৫০ থেকে ৭৫ বছর এবং তারা ১৯৮৮ সাল থেকে ১৯৯৪ সালের মধ্যে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক জাতীয় জরিপে অংশ নিয়েছিলেন, তাদের কাছ থেকে নেয়া নমুনা বিশ্লেষণ করেন এই চিকিৎসক ও গবেষক দল। আরো পড়ুন: সকালে নাস্তা করাটা কি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো? গুরুত্বপূর্ণ অথচ খাবারটি আপনি যথেষ্ট খাচ্ছেন না সুস্থ থাকার জন্য খাদ্যাভ্যাসে যে পরিবর্তন আনা জরুরি একমাস রোজা রাখলে যা ঘটে আপনার শরীরে অংশগ্রহণকারীরা জানান কিভাবে তারা সাধারণত সকালের খাবারটি গ্রহণ করতেন। সামগ্রিকভাবে ৫% উত্তরদাতা বলেছেন, তারা কখনোই সকালের খাবারটি মাঝে মাঝে খান নি, প্রায় ১১% বলেছেন তাদের সকালে খাওয়ার হার একেবারে বিরল, এবং ২৫% জানান যে তারা অনিয়মিতভাবে প্রাতরাশ সেরেছেন। গবেষকরা এরপর মৃত্যুর তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করেন। ২০১১ সাল নাগাদ জরিপে অংশগ্রহণকারী ২৩১৮ জনের জীবনাবসান ঘটে। গবেষকরা সকালের খাবার গ্রহণের হার এবং মৃত্যুহারের মাঝে যোগাযোগ কী তা জানতে তৎপর হন। সকালের নাশতা যারা বাদ দেন তাদের কার্ডিওভাসকুলার সমস্যার আশঙ্কা করছেন গবেষকরা। ধূমপান বা স্থূলতার মতো অন্যান্য ঝুঁকি চিহ্নিত করার পাশাপাশি গবেষক দলটি দেখলো যে, প্রাতরাশ বাদ দেয়া ব্যক্তিদের অন্য যেকোনো কারণে মারা যাওয়ার আশঙ্কা ১৯% এবং হৃদরোগে মারা যাওয়ার আশঙ্কা ৮৭%। চিকিৎসা গবেষণা এরইমধ্যে আমাদের সতর্ক করেছে যে, প্রাতরাশ বাদ দেওয়ার নেতিবাচক প্রভাব আমাদের শরীরের ওপর পড়ছে, কিন্তু বিজ্ঞানীরা এখনো এর মূল যোগসূত্রটি এখনো খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। এই পর্যবেক্ষণের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস বলছে যে, আমেরিকান প্রতিবেদন রিপোর্ট "নাশতা না খাওয়া যে হৃদরোগে মৃত্যুর সরাসরি কারণ তা প্রমাণ করতে পারে না।" বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: ফখরুল ছাড়া বাকীদের শপথ ঠেকাতে পারবে বিএনপি? ইহুদিবিদ্বেষী খোলা চিঠির পর সিনাগগে বন্দুক হামলা যে ব্যক্তিকে ছয় বছর বয়স থেকে আটকে রেখেছে চীন কতদিন থাকবে দাবদাহ, যা বলছে আবহাওয়া অফিস তবে সকালের নাশতায় কে কি খাচ্ছে সেটি আসেনি গবেষণায় "যেসব লোক সকালে নাশতা করে না (গবেষণা অনুসারে) তারা সম্ভবত ধূমপান ছেড়ে দিয়েছেন বা মদ্যপান ছেড়ে দিয়েছেন এমন ব্যক্তিরা, শারীরিকভাবে অক্ষম, বাজে খাদ্যাভ্যাস, এবং যারা সকালের আহার গ্রহণ করে থাকেন তাদের তুলনায় নিম্ন আর্থ-সামাজিক অবস্থান"। এনএইচএস এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক রিভিউতে এমনটা লেখা হয়েছে। সেখানে হৃদরোগের জন্য আরও ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। এই গবেষণাতে কেবল প্রাতরাশের বিষয়ে এককালীন মূল্যায়ন পেশ করা হয়েছে যে অভ্যাস পরবর্তীতে নাও থাকতে পারে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, বেশিরভাগ মানুষই প্রতিদিন সকালে আহার করছেন, কিন্তু তাদের অভ্যাসের ক্ষেত্রে হয়তো বিশদ পরিবর্তন থাকতে পারে। যেমন সকাল আটটায় স্বাস্থ্যসম্মত নাশতা খেয়েও কারও হয়তো দেরিতে একটি বেকন স্যান্ডউইচ কিংবা মিষ্টি জাতীয় সিরিয়াল খেতে পারেন। গবেষকরা বিশ্বাস করেন তাদের অনুসন্ধানে প্রাতরাশ বাদ দেয়া এবং কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ এর সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ডক্টর উয়েই বাও এই ফলাফলের পক্ষে বলেন, "বহু গবেষণার তথ্য দেখিয়েছে যে, সকালের খাবার গ্রহণ না করার ফলে ডায়াবেটিস, হাইপার-টেনশন এবং হাই কোলেস্টেরল এর ঝুঁকি থাকে।'' "আমাদের গবেষণা বলছে যে সকালের নাশতা খাওয়ার মাধ্যমে হতে পারে হৃৎযন্ত্রের সুস্থতা রক্ষার সহজ উপায়।" কতটা মারণঘাতী মিস্টার বাও এবং তার সহকর্মীরা আরও লিখেছেন, ''প্রাতরাশ গ্রহণ এবং হৃদরোগের ঝুঁকির মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয়ের ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তির "আর্থ-সামাজিক অবস্থান, বডি মাস ইনডেক্স এবং কার্ডিওভাসকুলার ঝুঁকির বিষয়গুলো বিবেচনায় নেয়া হয়েছে"। এই গবেষক-দল বলছে, তাদের জানামতে এটাই সম্ভবত প্রাতরাশ বাদ দেয়া এবং কার্ডিওভা��কুলার ডিজিজ সম্পর্কিত মৃত্যুহার বিষয়ে প্রথম কার্যকর বিশ্লেষণ। কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ- বিশেষ করে হৃদরোগ এবং স্ট্রোক হচ্ছে বিশ্বে মৃত্যুর সবচেয়ে প্রধান কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে কেবল ২০১৬ সালে এই কারণে বিশ্বে ১৫.২ মিলিয়ন মৃত্যু ঘটেছে । প্রাতরাশ বা সকালের নাশতাকে মনে করা হয় "দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার"। +text: বকেয়া বেতনের দাবিতে ১৩ই এপ্রিল গার্মেন্টস শ্রমিকদের বিক্ষোভ। বুধবারও বিভিন্ন এলাকায় তারা বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে। ঢাকার দারুসসালাম, মিরপুর, উত্তর ও দক্ষিণখানসহ বিভিন্ন এলাকায় গার্মেন্টস শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে আসে। এছাড়া গাজীপুর এলাকায়ও শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভে অংশ নেয়া শ্রমিকরা অভিযোগ করছেন, বহু গার্মেন্টস মালিক করোনাভাইরাস পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বেতন আটকে রেখেছে। গাজীপুরের বোর্ড বাজার এলাকায় অবস্থিত একটি গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিক সাবিনা আক্তার টেলিফোনে বিবিসি বাংলাকে বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে তাদের কোন বেতন দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, "আজকে ১৫ তারিখে আমাদের অফিসে আসতে বলছে। আজকেও আমাদের স্যালারি দিতেছে না। আমরা কিভাবে আমাদের পেটে ভাত দিব?" সাবিনা আক্তার জানান, গত ৭ই এপ্রিল পর্যন্ত তারা কারখানায় কাজ করেছেন। এরপর মালিকপক্ষ নোটিশ দিয়ে কারখানা বন্ধ করে। ঢাকার উত্তরখান এলাকায় একটি গার্মেন্টসে কাজ করেন মাসুদ রানা। তিনি টেলিফোনে বিবিসি বাংলাকে জানান, তাদের গত দুই মাসের বেতন পরিশোধ করেনি মালিকপক্ষ। "আমাদের তো বাঁচতে হবে। আমরা তো গত দুই মাস ডিউটি করছি। ঐ দুই মাসের বেতন দিক। মালিকরা করোনার টালবাহানা দিতেছে।" গত একমাসে হাজার-হাজার গার্মেন্টস শ্রমিককে চাকুরী থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গার্মেন্টস কর্মীদের নিয়ে কাজ করা অধিকার কর্মীরা গার্মেন্টস শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করেন জলি তালুকদার। তিনি বলেন গত একমাসে হাজার-হাজার গার্মেন্টস শ্রমিককে চাকুরী থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে। "আমরা ৪০-৪৫ টা গার্মেন্টসে প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক ছাটাইয়ের তালিকা করেছি। " তিনি অভিযোগ করেন, বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করার জন্য মালিক-পক্ষ একাধিক দিন ধার্য করলেও তাতে কোন কাজ হয়নি। ফলে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি প্রশ্ন ��োলেন, গার্মেন্টস খাতে প্রতিবছর রপ্তানি আয় প্রায় ৩৫ বিলিয়ন ডলার হলেও কেন তারা শ্রমিকদের একমাসের বেতন নিশ্চিত করতে পারলো না? জলি তালুকদার অভিযোগ করেন, শ্রমিকদের মজুরি আটকে রেখে এবং ছাঁটাই করার মাধ্যমে মালিক-পক্ষ হয়তো সরকারের কাছ থেকে সুবিধা আদায় করার ক্ষেত্র প্রস্তুত করছে। "মালিকরা শ্রমিকদের দিয়ে আরেক ধরণের চাপ তৈরি করে এরা বড় ধরণের দরকষাকষির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে আমার ধারণা।" করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরিতে অগ্রগতি কতদূর? টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি কোথায়, কেন এতো প্রাণঘাতী বেতন না দেয়া, বেতন কাটা, কারখানা লে-অফের অভিযোগ করোনাভাইরাসের প্রকোপে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প টিকে থাকতে পারবে? করোনাভাইরাস: হঠাৎ-দরিদ্রদের খাদ্যের সঙ্গে নগদ টাকাও দিতে হবে বিশ্বের তেল উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণে কমানো হচ্ছে বাংলাদেশ সরকার গার্মেন্টস সহ রপ্তানি খাতের জন্য প্রণোদনা হিসেবে পাঁচ হাজার কোটি টাকা বিতরণের এক রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে মালিকপক্ষ কী বলছে? করোনাভাইরাস সংক্রমণ-জনিত অর্থনৈতিক সংকট সামলাতে বাংলাদেশ সরকার গার্মেন্টস সহ রপ্তানি খাতের জন্য প্রণোদনা হিসেবে পাঁচ হাজার কোটি টাকা বিতরণের এক রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে। তবে শর্ত হলো, এ টাকা দিয়ে শ্রমিকদের বেতন দিতে হবে। মালিকরা এই টাকা পাবেন দুই শতাংশ হারের সুদে ঋণ হিসাবে। সরকার যে টাকা দিয়েছে সেটি দিয়ে এপ্রিল মাস থেকে বেতন পরিশোধ করার কথা। কিন্তু মার্চ মাসের বেতন মালিকদের পরিশোধ করার কথা। তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বা বিজিএমইএ'র সভাপতি রুবানা হক বিবিসি বাংলাকে বলেন, বিজিএমইএ'র আওতায় যত কারখানা আছে সেখানে প্রায় ২৬ লক্ষ শ্রমিক কাজ করে। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ১৬ লক্ষ শ্রমিকের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। বিজিএমইএ'র আওতার বাইরেও আরো প্রায় ২০ লক্ষ শ্রমিক আছে বলে শ্রমিক নেতারা বলছেন। রুবানা হক বলেন, আগামী ১৬ই এপ্রিল শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করার সর্বশেষ সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। "এখানে মালিকদের দোষ দেবার আগে আপনারা ক্রেতাদেরও একইভাবে বলবেন।" সরকার যে টাকা দিয়েছে সেটি দিয়ে এপ্রিল মাস থেকে বেতন পরিশোধ করার কথা। কিন্তু মার্চ মাসের বেতন মালিকদের পরিশোধ করার কথা। তিনি বলেন, এক ধরণের অনিশ্চয়তা থেকে শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছে। "ওয়ার্কারের এই অনিশ্চয়তা মালিকপক্ষ থেকে আসেনি। এটা এসেছে ক্রেতারা ক্রয়াদেশ বাতিল করেছেন বলে। " শ্রমিকদের বেতন আটকে রেখে কিংবা ছাটাই করার মাধ্যমে মালিক নতুন করে দরকষাকষির নতুন কোন ক্ষেত্রে প্রস্তুত করছে কি? এমন প্রশ্নে রুবানা হক বলেন, "প্রশ্নই উঠেনা। এটা যদি কেউ বলে থাকেন, মিথ্যা কথা বলছেন। আমরা এর শক্ত প্রতিবাদ করছি।" "যেখানে আমরা পোশাক শিল্পে ক্রান্তিলগ্নে পৌঁছেছি, সেখানে আমারা আমাদের কোটি-কোটি টাকার ইনফ্রাস্টাকচারকে আমরা এভাবে সামনে ঠেলে দেব হুমকির মুখে?" রুবানা হক বলেন, ৮০ শতাংশ করাখানা প্রত্যেক মাসে ঠিকমতো দেয়।। বাকি ২০ ভাগ হয়তো ঠিকমতো বেতন দিতে পারে না বলে তিনি উল্লেখ করেন। বাংলাদেশে বকেয়া বেতনের দাবিতে শত-শত গার্মেন্টস শ্রমিক বুধবার ঢাকা শহর এবং এর আশপাশের এলাকায় রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে। +text: খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনা অন্য দুটি দল বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির ফরম বিক্রি চলছে। এবছর আওয়ামী লীগের চার দিনে ফরম বিক্রি হয়েছে ৪ হাজারেরও বেশি। দলগুলো থেকে যে বিপুল সংখ্যক মানুষ মনোনয়ন ফরম কিনেছেন তাদের মধ্যে যেমন দলের নেতাকর্মীরা রয়েছেন তেমন রয়েছেন অভিনেতা, ক্রিকেটার। এখন প্রশ্ন হল দলগুলো মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয় বিবেচনা করবে? আওয়ামী লীগ কোন বিষয়গুলো বিবেচনা করবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলছিলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা গত দুই বছর ধরে মাঠ পর্যায়ে জরিপ করছেন। অক্টোবরে সর্বশেষ জরিপের প্রতিবেদন এসেছে। ৩/৪ মাস পর পর সার্ভে রিপোর্ট এসেছে। বিভিন্ন সোর্স থেকে এই তথ্যগুলো নেয়া হয়েছে। ধানমন্ডির কার্যলয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ফরম কিনতে যাচ্ছেন তিনি বলেন, এই জরিপের জন্য এনজিও, শিক্ষকদের নিয়ে একটা দল আছে। দলের এরকম ৫/৬টি সোর্স রয়েছে। মি. হানিফ বলেন, "এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যে এলাকায় একজন প্রার্থীর সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা সবচেয়ে বেশি এবং ক্লিন ইমেজ আছে তাকে প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হবে।" মনোনয়নের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কে নেবেন? আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে দুটি মনোনয়ন বোর্ড আছে। একটা সংসদী��় মনোনয়ন বোর্ড এবং অন্যটি স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড। সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড ১১ সদস্য বিশিষ্ট। এই দুই বোর্ডের প্রধান দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। আওয়ামী লীগের সাথে জোটবদ্ধ আরো দল রয়েছে, তার মধ্যে জাতীয় পার্টি অন্যতম। মি. হানিফ জানান "আমাদের যে জরিপ দল রয়েছে তারা একটা নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের বাইরে ঐ এলাকায় সম্ভাব্য অন্য সব রাজনৈতিক দলের প্রার্থী সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে।" সেই সব দলের প্রার্থীদের ব্যাপারে এলাকায় একই ভাবে জরিপ চালিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে তিনি জানান। নয়া পল্টনে বিএনপির কার্যলয়ের সামনের দৃশ্য বিএনপি কোন বিষয়গুলো বিবেচনা করবে বিএনপি গতকাল সোমবার থেকে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেছে। বিএনপি নেতা মওদুদ আহমেদ বলেছেন, তাদের কাছে ৫ বছরের জরিপের রির্পোট রয়েছে। "প্রার্থী নির্বাচনে আমাদের অনেকগুলো মানদণ্ড আছে। প্রধান বিষয় হল দলের জন্য তার অবদানটা কি সেটা আমরা দেখবো, আর গত ১০ বছরে যে সংগ্রাম হল, আন্দোলন হল সেই আন্দোলন তার ভূমিকা কি ছিল সেটা আমরা দেখবো। তার আর্থিক সচ্ছলতা আমরা বিবেচনা করবো। তৃনমূল পর্যায়ের আমাদের সংগঠনের ব্যক্তিদের মতামত নেব।" ৩০শে ডিসেম্বরকে নির্বাচনের নতুন তারিখ হিসেবে তিনি ঘোষণা করা হয়েছে। মি. আহমেদ বলেন, "অনেক এলাকা আছে যেখানে মানুষ বিএনপি করেন না কিন্তু বিজ্ঞ, শিক্ষিত যারা তাদের মতামত নেয়ার চেষ্টা করি। তারপর দেখি প্রার্থী জিতবে কিনা। এটা একটা বড় মাপকাঠি। হয়ত একটা প্রার্থীর সবকিছু আছে কিন্তু সে হয়ত ভোট পাবে না অথবা নির্বাচনে জিতবে না। সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হতে পারে। তবে ৯৫% জায়গায় যেসব মাপকাঠির কথা বললাম সেগুলো বিবেচনায় আনা হবে প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে। যখন আমরা প্রার্থীদেরকে ডাকবো তখন ৫ বছরের জরিপের এই সব তথ্যগুলো আমাদের সামনে থাকবে।" তবে তিনি উল্লেখ করেন, সবাই যে নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য মনোনয়ন পত্র কেনেন তা নয়, অনেকে আছেন যারা তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য কেনেন। বিএনপির মনোনয়নের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কে নেবেন? মওদুদ আহমদ বলেন, "মোটামুটি নির্ভরযোগ্য সোর্স থেকে তারা তথ্য সংগ্রহ করেন। সেগুলো আবার 'ক্রস-চেক' করেন। সংসদীয় পার্লামেন্টারি বোর্ড এই প্রার্থ��� নির্বাচন করবেন।" তবে বোর্ডের প্রধান খালেদা জিয়া এখন দুর্নীতির দায়ে কারাগারে রয়েছেন। মওদুদ আহমেদ বলেন, সেক্ষেত্রে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। তিনি বলেন, "ওনার অনুমোদন নিয়ে আমরা ঘোষণা দেব। আমরা নিজেরা কোন চূড়ান্ত ঘোষণা দেব না।" মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ২৮শে নভেম্বর। আরো পড়ুন: নির্বাচনের জন্য কতোটা প্রস্তুত বিএনপি স্ট্যান লি কীভাবে হলেন মার্ভেল কমিকসের স্রষ্টা আসিয়া বিবিকে আশ্রয় দিতে চায় কানাডা বাংলাদেশ একাদশ জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়েছে কয়েকদিন আগে। আওয়ামী লীগের ফরম বিক্রির সময় ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। +text: ব্রিটিশ-পাকিস্তানি সাজ দার বলেন যে, ক্যান্সারের কারণে তার কাছের আত্মীয়রাও তাকে এড়িয়ে চলতো। তিনি সাথে সাথেই বুঝতে পারেন যে সেটি আসলে কী। তিনি এটাও বুঝতে পারেন যে, পরীক্ষা করিয়ে সময় ক্ষেপণ করার মতো সময় তার হাতে নেই। কিন্তু বার্কশায়ারের স্লাউ শহরে তার পাকিস্তানি সম্প্রদায়ের মধ্যে একজন কুষ্ঠরোগীর মতো চিকিৎসা নেয়ার ভয় তাকে তাড়িত করে। বেশ কয়েক সপ্তাহ তিনি নিজের উপর অনেকটা জবরদস্তি করেই এ বিষয়ে চিন্তা করা বন্ধ রাখেন এবং স্ক্রিনিংয়ের জন্য যাননি। কিন্তু তার মা তাকে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সাক্ষাতের সময় ঠিক করে দেন এবং তখনই কেবল তার পরীক্ষা করা হয়। এতে তিনি জানতে পারেন যে, তার আসলে ক্যান্সারের মতো একটি পিণ্ড নয় বরং তিনটি আলাদা পিণ্ড রয়েছে। তাকে তার গর্ভাবস্থা পরিহার করে সন্তান না নেয়ার পরামর্শ দেয়া হলেও তিনি তা নাকচ করেন। কিন্তু অতিরিক্ত চিকিৎসা ও ওষুধ গ্রহণের কারণে কয়েক সপ্তাহ পরেই গর্ভপাত হয় তার। আরো পড়ুন: অন্ধ নারীরাই শনাক্ত করছেন স্তন ক্যান্সার রেনিটিডিন নিষিদ্ধ করলো বাংলাদেশ-সহ কয়েকটি দেশ সবার জন্য পেনশনের ব্যবস্থা কীভাবে করা সম্ভব এর পরে ১০ বছর কেটে গেছে। কিন্তু মিস দার এখনো মনে করতে পারেন যে, কিভাবে তাকে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে খাবারের সময় একবার ব্যবহারযোগ্য একটি থালা দেয়া হয়েছিল। কারণ ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক ভেবেছিলেন যে, ক্যান্সার ছোঁয়াচে। তিন সন্তানের এই জননীকে একাকী করে রাখা হয়েছিল "তারা আসলে মনে মনে ভাবছিল যে, আমি যে থালাটি ব্যবহার করবো সেই একই থালা তারা পরবর্তীতে আবার কিভাবে ব্যবহার করবে," তিনি বলেন। "আপনার নিজেকে বহিরাগত মনে হবে। রুম ভর্তি মানুষ থাকলেও মনে হবে যে আমি একা। আরেকটি অনুষ্ঠানে, মিস দার বলতে শোনেন যে, তার এক আত্মীয় বলছেন গ্লাসগুলো যাতে ভালোভাবে পরিষ্কার করা হয়।" শিক্ষার অভাব এবং উদ্বেগের কারণে তিনি এ ধরণের ভয়ংকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন। তবে তরুণ প্রজন্ম এ বিষয়ে বেশ উদার এবং জানেও। কিন্তু অনেককেই বড়রা শর্ত জুড়ে দিতো। ১৯৯৯ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। তিনি মনে করেন যে, ক্যান্সারের চিকিৎসা তাদের বৈবাহিক সম্পর্কে ভাঙনের জন্য দায়ী। "আমরা একসাথেই থাকতাম তবে স্বামী আর স্ত্রীর মতো নয়," বলেন মিস দার। অনেক দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই প্রাথমিক অবস্থাতে স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে ক্যান্সার সনাক্ত করা সম্ভব। কিন্তু ক্যান্সার বিষয়ক দাতব্য প্রতিষ্ঠান ম্যাকমিলানের হিসাবে, শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় কৃষ্ণাঙ্গ এবং এশিয়দের মধ্যে স্ক্রিনিং করানোর হার বেশ কম। দাতব্য প্রতিষ্ঠানটি মনে করে এর পেছনে রয়েছে ক্যান্সার নিয়ে কম আলোচনা, ভাষার প্রতিবন্ধকতা এবং 'সাংস্কৃতিক স্পর্শকাতরতা'। 'অভিশপ্ত?' মিসেস ভানমালি বলেন, বাড়ির বাইরে পা রাখা মাত্রই তার দিকে বার বার তাকিয়ে থাকতো আশেপাশের মানুষরা লেস্টারের আনিশা ভানমালি ক্যান্সারের জন্য চিকিৎসা নিচ্ছেন। "আমার মনে হয় যে, অনেক মানুষই আমার কাছে আসতে চায় না," এক সন্তানের এই জননী বলেন, যাকে শুরু থেকেই একটি সংস্থা সহায়তা দিয়ে আসছে। "আমি দেখি যে মানুষ কানাঘুষা করছে, কিন্তু যখন আমি তাদের দিকে তাকাই, তারা তখন অন্য দিকে তাকায়। আর এটা সব সময়ই ঘটে থাকে।" এক সন্তানের জননী বলেন যে, তার প্রতি মানুষের আচরণ দেখে মনে হতো যে তিনি যেন নিজে নিজেই ক্যান্সার ডেকে এনেছেন "কৃতকর্ম একটা বিশাল জিনিস। আমার মনে হয় যে এই পরিস্থিতিতে আসার পেছনে নিশ্চয়ই আমার কোন কাজ দায়ী। "আমার একটি পরিবার ছিল যারা অন্তত এতটুকু জানতে চেয়ে বার্তা পাঠাতো যে 'তুমি কেমন আছ?' গত কয়েক বছর ধরে তাদের সাথে আমার কোন কথা হয়নি। "এশিয় সম্প্রদায় মনে করে যে তাদের ক্যান্সার হবে না, যা আসলে ঠিক নয়।" অসুস্থ্য অবস্থায় চিকিৎসা নেয়ার সময় সমুদ্র সৈকতে স্বামী রাকেশের সাথে মিসেস ভানমালি শ্বেতাঙ্গদের(১৩%) তুলনায় কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকান (২৫%) এবং কৃষ্ণাঙ্গ ক্যারিবিয়দের(২২%) মধ্যে শেষ ���্তরে গিয়ে ক্যান্সারের চিকিৎসা নেয়ার হার বেশি। ইংল্যান্ডের সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগের ২০১৬ সালের পরিসংখ্যান অন্তত সেটাই বলে। আর ম্যাকমিলানের হিসেবে: •শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় দ্বিগুণ পরিমাণ কৃষ্ণাঙ্গ পেটের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় •শ্বেতাঙ্গ পুরুষদের তুলনায় কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষদের মূত্র থলির ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা তিনগুণ বেশি •এশিয়দের মধ্যে যকৃতের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা তিন গুণ বেশি •কৃষ্ণাঙ্গ এবং এশিয় নারী যাদের বয়স ৬৫ বা তার বেশি তারা সার্ভিক্যাল ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। বিএমই ক্যান্সার কমিউনিটির প্রধান রোজ থম্পসন নিজেও একজন ক্যান্সারের রোগী যিনি স্তন ক্যান্সারে নিজের মা, জমজ এক বোন এবং ছোট আরেক বোনকে হারিয়েছেন। মিস থম্পসন বলেন, গত কয়েক বছরে সচেতনতা কিছুটা বেড়েছে কিন্তু ক্যান্সার নিয়ে এ ধরণের মিথ কিছু কিছু ক্ষেত্রে যেমন "গোঁরা সম্প্রদায় যেখানে মানুষের তথ্য জানার সুযোগ নেই" সেখানে প্রচলিত আছে। রোজ থম্পসন বলেন যে, ক্যান্সার আক্রান্ত কৃষ্ণাজ্ঞ ও এশিয়দের আরো বেশি সহায়তার জন্য কর্মক্ষেত্রে আরো বৈচিত্র্য থাকা জরুরী ক্যান্সার চ্যাম্পিয়ন ম্যাকমিলান রিডিংয়ে একটি পাইলট প্রকল্প চালু করা হয়েছে এই সমস্যাকে সামনে তুলে ধরার জন্য। প্রতিষ্ঠানটি ২৫ জন্য ক্যান্সার চ্যাম্পিয়নকে নিয়োগ দিয়েছে যাদের কাজ তাদের একই জাতিগত পটভূমির মানুষদের ক্যান্সারের ঝুঁকি সম্পর্কে জানানো। "আমরা জানি যে, সাউথ রিডিংয়ের জাতিগত সংখ্যালঘু এবং বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে ক্যান্সার বিষয়ে সচেতনতা এবং বোঝাপড়াটা কম," বলেন ডা. কাজল পাটেল যিনি বার্কশায়ার ওয়েস্ট ক্লিনিক্যাল কমিশনিং গ্রুপের ক্যান্সার বিষয়ক প্রধান। "প্রায়ই দেখা যায় যে, এসব সম্প্রদায়ের যেসব সদস্যরা ক্যান্সারের চিকিৎসা নেয় তারা একদম শেষ পর্যায়ে পৌঁছে তারপর আসে। যার কারণে বেঁচে থাকার হারও কমে যায়।" "তার উপর, তারা যে চিকিৎসা নেয় তা ক্যান্সারের হয় না ,যা আসলে তাদের প্রয়োজন।" সাজ দার যখন প্রথমবার গর্ভবতী হন তখন তিনি তার ডানদিকের স্তনে হাত বুলাতে গিয়ে একটি পিণ্ড বা চাকা অনুভব করেন। +text: সন্দেহভাজন হত্যাকারীকে ভিডিওতে দেখা গেছে বলতে "মুসলিমদের হাত থেকে হিন্দুদের সম্মানরক্ষার খাতিরে" এই ঘটনা। সম্প্রতি দিল্লিতে এধরনের সহিংসতা বন্ধের দাবিতে 'শান্তি মিছিল' করেছে ভারতের একটি মুসলিম সংগঠন হত্যার পর কার্যত 'ধর্মীয় কারণে চালানো এই হামলার' ভিডিও ইন্টারনেটে শেয়ার করা হয়। দ্বিতীয় আরেকটি ভিডিওতে অভিযুক্ত হত্যাকারীকে হামলার স্বপক্ষে যুক্তি দিতে শোনা যায় ''মুসলিমদের হাত থেকে হিন্দুদের সম্মানরক্ষার খাতিরে এই হামলা।'' পুলিশ বলেছে সন্দেভাজন ব্যক্তি শম্ভু লাল নামে একজন হিন্দু এবং নিহত ব্যক্তি একজন মুসলমান। রাজস্থানের কোন কোন এলাকায় ইন্টারনেট সেবা ব্যবস্থা স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে এবং এই ভিডিও শেয়ার না করার জন্য লোকজনের কাছে আহ্বান জানানো হয়েছে। শান্তি রক্ষায় রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এই হামলার ঘটনা ঠিক কখন ঘটেছে তা স্পষ্ট নয়। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে সন্দেহভাজন শম্ভু লাল মুসলিমদের সাবধান করে দিয়ে বলছে: ''আমাদের দেশে যদি 'লাভ জিহাদ' চালাতে চান- আপনারও এই পরিণতি হবে।'' বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: ভারতের ক্ষুদ্র কয়েকটি কট্টর হিন্দু গোষ্ঠির প্রচারণায় এই 'লাভ জিহাদ' শব্দটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই গোষ্ঠিগুলো মুসলমানদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে যে তারা ''হিন্দু নারীদের ভুলিয়ে ভালিয়ে তাদের নিজেদের ধর্ম থেকে সরিয়ে আনার ষড়যন্ত্রে'' লিপ্ত রয়েছে। উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা আনন্দ্ শ্রীবাস্তবা বিবিসি হিন্দিকে জানিয়েছেন যে অভিযুক্ত ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কিছু ''ঘৃণা উস্কে দেওয়া'' ভিডিও শেয়ার করেছে। পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেছেন হামলাকারী এবং নিহত দুই ব্যক্তি একে অপরকে চিনত না এবং তাদের মধ্যে শত্রুতার কোন ইতিহাস নেই। নিহত ব্যক্তির নাম মোহম্মদ আফরাজুল এবং সে পশ্চিমবঙ্গ থেকে সেখানে কাজ করতে যাওয়া এক দিনমজুর। রাজস্থানের উদয়পুর শহরে গত দশ বছরের ওপর ওই ব্যক্তি কাজ করছে এবং ওই শহরের বাসিন্দা। ''আমরা জেনেছি শম্ভু লালের পরিবারের কারোর ভিন্ন ধর্মে বিয়ে হয়নি। এই ভিডিওগুলোতে সে ঘৃণা ছড়ানো বিবৃতি দিয়েছে। সহিংসতা এড়ানোর জন্য আমরা দুই সম্প্রদায়কে নিয়ে বৈঠক করছি,'' বলে জানান মি: শ্রীবাস্তবা। ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাজস্থানের পুলিশ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে যার বিরুদ্ধে আরেক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা এবং তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেবার অভিযোগ আনা হয়েছে। +text: টেকনাফে পাহাড়ের পাদদেশে রোহিঙ্গা শিবিরের বসতিগুলো রাতের বেলা যেমন দেখতে কক্সবাজারের পুলিশ জানিয়েছে শনিবার রাতে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, টেকনাফের নয়াপাড়া এলাকায় রোহিঙ্গাদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। মি: হোসেন বলেন, রোহিঙ্গাদের মধ্যে দুটি গ্রুপ সেখানে নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। গ্রুপ দুটির সদস্যরা পুরাতন রোহিঙ্গা হিসেবে পরিচিত, যারা ১৯৯২ সালের পরে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী এ গ্রুপ দুটির মধ্যে একটি 'ছলিম গ্রুপ' এবং অপরটি 'জাকির গ্রুপ'। এরা ক্যাম্পে বসবাস করেনা এবং পাহাড়ে লুকিয়ে থাকে বলে পুলিশ দাবি করছে। মাঝে মধ্যেই তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেবার চেষ্টা করে। উভয় গ্রুপ চেষ্টা করছে নতুন রোহিঙ্গাদের মাঝে নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে। এ দুটি গ্রুপ ছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি গ্রুপ সক্রিয় আছে কর্মকর্তারা বলছেন। আরো পড়তে পারেন: রোহিঙ্গা শিশুদের পড়াশোনায় বাধা নেই: কমিশনার রোহিঙ্গা বিষয়ে তদন্তের অনুমতি দিলো আইসিসি রোহিঙ্গা: মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার অভিযোগ কেন? নবাগত রোহিঙ্গাদের নিজেদের আয়ত্তে রাখার জন্য উভয় গ্রুপ এখন তৎপরতা চালাচ্ছে বলে পুলিশ বলছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্প নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের মাঝে উদ্বেগ বাড়ছে। পুলিশের ভাষ্য মতে রোহিঙ্গাদের এই গ্রুপ দুটি ইয়াবা চোরাচালান, মানব পাচার এবং ডাকাতি সহ নানা অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত। শনিবার রাতে নয়াপাড়া ক্যাম্পে ছলিম গ্রুপের অনুসারীরা সামশুল নামে এক রোহিঙ্গাকে গুলি করে। এ খবর পেয়ে জকির গ্রুপের অনুসারীরা অস্ত্র নিয়ে সেখানে হাজির হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে এক রোহিঙ্গা মারা যায় এবং আরেকজন গুরুতর আহত হয়। রোহিঙ্গা ক্যাম্প নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে রোহিঙ্গারা যখন বাংলাদেশে যখন আশ্রয় নিয়েছিল তখন তাদের প্রতি স্থানীয় বাসিন্দারা এবং সরকার উদার মনোভাব দেখিয়েছে। কিন্তু বছর না ঘুরতেই পরিস্থিতি বদলে গেছে। সে সহানুভূতির ছিটেফোঁটাও এখন অবশিষ্ট নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, রোহিঙ্গাদের একটি অংশ নানা ধরণের অপরাধের সাথে জড়িয���েছে। দিনে নিরাপত্তা বাহিনীর টহল থাকলেও রাতে অরক্ষিত থাকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প। গত দুই বছরে ক্যাম্পের ভেতরে রোহিঙ্গাদের আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে অন্তত ৪৫টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের হামলায় স্থানীয় বাংলাদেশীও নিহত হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে গত দুই বছরে অন্তত ৫০ জন রোহিঙ্গা পুলিশ কিংবা র‍্যাব এ গুলিতে নিহত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা দাবি করছেন, এসব রোহিঙ্গা 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হয়েছে। কিন্তু মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ মনে করে 'বন্দুকযুদ্ধ' নয় বরং এসব রোহিঙ্গাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ এবং র‍্যাব-এর ভাষ্য অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের গ্রুপগুলো ক্যাম্পের ভেতরে নানা অপরাধ করে গহীন পাহাড়ে লুকিয়ে যায়। দুদিন আগে র‍্যাব হেলিকপ্টারের মাধ্যমে সেসব পাহাড়ের উপর টহল দিয়ে রোহিঙ্গা গ্রুপগুলোর অবস্থান সম্পর্কে ধারণা নেবার চেষ্টা করেছে। র‍্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, এখন সেসব পাহাড়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপ সন্ধ্যার পর ক্যাম্পগুলোতে তৎপর হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অভিযান আরো জোরালো করা হবে বলে কর্মকর্তারা বলছেন। কক্সবাজারের টেকনাফে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দুটি গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলিতে অন্তত একজন নিহত এবং আরো একজন আহত হয়েছে। +text: স্টর্মি ড্যানিয়েলসের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ড্যানিয়েলস দাবি করছেন যে ট্রাম্পের সাথে তার সম্পর্ক ছিলো যা শুরু হয়েছিলো ২০০৬ সালে যদিও তা প্রত্যাখ্যান করেছেন মিস্টার ট্রাম্প। কিন্তু তাদের মধ্যকার এ গল্পটি গুরুত্বপূর্ণ কেন? এবং এ সম্পর্কে কি জানা দরকার ? বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ভয় কি কাটলো এবার? শাহিরা ইউসুফ: ব্রিটেনের প্রথম হিজাবধারী মডেল রুশ গুপ্তচর হত্যা চেষ্টা: নার্ভ এজেন্টের সন্ধান মিলেছে কে এই স্টর্মি ড্যানিয়েলস? তার এখনকার পরিচিত পর্ণ তারকা বা প্রাপ্তবয়স্কদের ছবির অভিনেত্রী হিসেবে, তবে তার প্রকৃত নাম স্টেফানি ক্লিফোর্ড। যুক্তরাষ্ট্রের লুজিয়ানায় ১৯৭৯ সালে জন্মগ্রহণ করেছেন তিনি। পর্ণ ছবির ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি সম্পৃক্ত হন ২০০৪ সালে, সেখানে তার নাম স্টর্মি ড্যানিয়েলস। হুইস্কির নামকর��� ব্র্যান্ড জ্যাক ড্যানিয়েলস থেকে একটি অংশ তিনি নিজের নামের সাথে বেছে নিয়েছেন নিজেই। নির্বাচনে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন? একবার নির্বাচনে দাঁড়ানোর কথাও ভেবেছিলেন এই পর্ণ তারকা। লুজিয়ানায় সিনেট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা চিন্তা করেছিলেন তিনি। কিন্তু পরে সে চিন্তা থেকে সরে আসেন। আর এর কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন যে তার প্রার্থিতাকে গুরুত্ব সহকারে নেয়া হচ্ছেনা। স্টর্মি ড্যানিয়েলস তার অভিযোগ কী? এটা জানার জন্য ফিরে যেতে হবে ২০১৬ সালের জুলাইয়ে। স্টর্মি জানান তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে দেখা করেছেন একটা চ্যারিটি গলফ টুর্নামেন্ট চলার সময়। এটা হচ্ছিলো ক্যালিফোর্নিয়া ও নেভাডার মাঝে একটা রিসোর্ট এলাকায়। এর আগে এক সাক্ষাতকারে তিনি জানান যে মিস্টার ট্রাম্প তাকে ডিনারে নিমন্ত্রণ করেছিলেন এবং তিনি তার হোটেলের রুমে তার সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে তাদের মধ্যে যৌন সম্পর্ক হয়েছিলো বলে দাবি করেন স্টর্মি। যদিও মিস্টার ট্রাম্পের আইনজীবী এটি পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে স্টর্মি ড্যানিয়েলসের দাবি যদি সত্যি হয় তাহলে ঘটনাটি ঘটেছিলো ডোনাল্ড ট্রাম্পের কনিষ্ঠ পুত্র ব্যারনের জন্মের মাত্র চার মাসের মধ্যে। আর কি কি বলছেন স্টর্মি ড্যানিয়েলস? স্টর্মির দাবি মিস্টার ট্রাম্প তাকে তার টিভি শোতে নেয়ার কথা বলেছেন। তিনি বলছেন মিস্টার ট্রাম্পের সাথে থাকার সময় একটি প্রামাণ্যচিত্রও দেখেছিলেন। দু জনের মধ্যে অনেক বছর ধরেই কথা হচ্ছিলো দাবি করে তিনি আরও জানান ২০১০ সালে যখন তিনি সিনেটে নির্বাচনের পরিকল্পনা বাদ দেন সেই সময়ে দুজনের মধ্যে শেষবার কথা হয়। যদিও এ সম্পর্ক নিয়ে গুজব তৈরি হয় ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়। মেলানিয়া ট্রাম্প ও কনিষ্ঠ পুত্র ব্যারনের সাথে ডোনাল্ড ট্রাম্প তাহলে এতদিন পর একটি এখন খবর কেন? গত কয়েকমাস ধরে এ খবরটি হচ্ছে। জানুয়ারিতে ওয়াল স্ট্রীট জার্নালে একটি আর্টিক্যাল প্রকাশিত হয়েছিলো যেখানে দাবি করা হয় যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আইনজীবী মাইকেল কোহেন ২০১৬ সালের অক্টোবরে অর্থাৎ নির্বাচনের ঠিক এক মাস আগে মিস ক্লিফোর্ডকে (স্টর্মি ড্যানিয়েলস এর প্রকৃত নামে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দেন। মিস্টার কোহেন এটি প্রত্যাখ্যান করেছেন। যদিও পরে ফেব্রুয়ারি মাসে এসে তিনি টাকা দেয়ার কথা স্বীকার করেন তবে দাবি করেন যে ট্রাম্প বা তার সংশ্লিষ্ট কেউ জানতেননা। জার্নালটির দাবি এ অর্থ দেয়া হয়েছে একটি অপ্রকাশিত চুক্তির আওতায় যেখানে শর্ত ছিলো যে মিস ক্লিফোর্ড মিস্টার ট্রাম্পের সাথে সম্পর্কের বিষয়ে কিছু প্রকাশ করবেননা। হোয়াইট হাউজ অবশ্য বলছে এগুলো পুরনো খবর যা নির্বাচনের আগে প্রকাশিত হয়েছিলো এবং এগুলো প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। মিস ক্লিফোর্ডের আইনজীবী টুইট করে জানান তারা এ নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার আদালতে গেছেন। আর বুধবার হোয়াইট হাউজ দাবি করে মামলায় ট্রাম্প জিতেছেন এবং তাতেও ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষুব্ধ হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কেমন? ডোনাল্ড ট্রাম্প ও স্টর্মি ড্যানিয়েলস এর মধ্যকার ঘটনাপ্রবাহ অনেকদূর এগোলেও অনেকটাই চুপ রিপাবলিকান শিবির। তবে সাউথ ক্যারেলাইনার কংগ্রেসম্যান মার্ক স্যানফোর্ড ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন এটি 'গভীর সমস্যা'। অন্যদিকে ডেমোক্র্যাটদের তরফে অনেকেই মিস ড্যানিয়েলসকে অর্থ দেয়ার ঘটনাটিকে তদন্ত করার জন্য এফবিআইয়ের প্রতি আহবান জানাচ্ছে। মাইকেল কোহেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ওপর কি কোন প্রভাব পড়বে? অভিযোগটি ক্রমশই জোরদার হচ্ছে এবং এটি আলোচনা থেকে সরে যাওয়ার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছেনা। একদিকে রাশিয়া নিয়ে তদন্ত চলছে। অন্যদিকে মিস্টার ট্রাম্পের সহযোগীদের অনেকেই তাকে ছেড়ে যাচ্ছেন বা কেউ নজরদারিতে আছেন। এটাকে আলোচনা থেকে সরাতে হোয়াইট হাউজের দরকার আরেকটি স্ক্যান্ডাল,এমন মতও আসছে? অনেকে মনিকা লিউনস্কির সাথে সম্পর্কের বিষয়ে মিথ্যা বলায় অভিশংসনের মুখোমুখি হয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, সে উদাহরণও তুলছেন। এখন প্রশ্ন উঠছে বিল ক্লিনটনের মত কি কোন বিপদে পড়তে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ? প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্মিত ছবির অভিনেত্রী স্টর্মি ড্যানিয়েলস মামলা করতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। +text: বারবার রক্তাক্ত হয়েছে সেন্ট পিটার্সবার্গের যে গীর্জা আর এই গির্জা ঘুরতে এসে এক ব্রাজিলীয় দর্শনার্থীর মন্তব্য হলো 'ইতিহাস, ঐতিহ্য ও শোক, এখানে তিন ধরণের অনুভব হচ্ছে'। এবারের বিশ্বকাপে রাশিয়ার বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনার পাশেই তৈরি করা হয়েছে ফিফা ফ্যানজোন। সেন্ট পিটার্সবার্গের ফিফা ফ্যান জোনের ঠিক সামনেই দেখা যায় সুরম্য এই গীর্জা। লম্বা লাইন ধরে ঢুকছেন বিভিন্ন দেশ থেকে আগত দর্শনার্থীরা। জনপ্রতি ২৫০ রুবলের প্রবেশমূল্য এই গীর্জায়। যেই অর্থের বড় অংশ এর সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণে খরচ হয়ে আসছে। মূলত গীর্জা হলেও, এটি এখন ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে ঠায় দাঁড়িয়ে। রাশিয়ান সম্রাট দ্বিতীয় আলেকজান্ডার ১৮৫৫ সালে ক্ষমতা পান। তার ঠিক ২৬ বছর পর তাকে মেরে ফেলা হয়। এই সম্রাটের সমাধিস্থলই এখানকার মূল। ১৯৩০ সালে সোভিয়েত সরকার গীর্জাটি বন্ধ করে দেয় এবং সংস্কার করে। মৃতদেহ যেখানে সমাহিত সেখানে সেখানে পাথুর দিয়ে ঢেকে দেয়া। এই পাথর কোলিভান গ্রাইন্ডিং ফ্যাক্টরি ও একাটেরিনবার্গ ও পেটারহফ ল্যাপিডারিতে তৈরি। ইউরাল, আল্টাইরোডোনাইট, জ্যাসপার ও সেরপেন্টাইব পাথর থেকে নেয়া হয়েছে এগুলো। এই সমাধিসৌধ তার স্মরণে তৈরি করেছেন উত্তরাধিকারী তৃতীয় আলেকজান্ডার। ১৮১৮ সালে মস্কোর ক্রেমলিনে জন্ম নেয়া দ্বিতীয় আলেকজান্ডার, ১৮৮১ সালে মারা যান আততায়ীর হাতে, সেন্ট পিটার্সবার্গের উইন্টার প্যালেসে। দ্বিতীয় আলেকজান্ডার পোল্যান্ডেরও রাজা ছিলেন। রাশিয়ার সম্রাট দ্বিতীয় আলেকজান্ডারের সমাধিস্থলের দুটি ভাগ, গীর্জার মূল প্রান্ত আলাদা হয়েছে ইতালিয়ান মার্বেল পাথরে, যা ইতালির জেনোয়া থেকে তৈরি হয়ে এসেছে। দেয়ালজুড়ে জিশু ও মেরীর চিত্র, যা মোজাইকে তৈরি। তৃতীয় আলেকজান্ডার গীর্জাটি প্রথাগত রাশিয়ান কায়দাত তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন।যাতে সেন্ট পিটার্সবার্গের যে পাশ্চাত্য ভাব তা থেকে বিরত থাকা যায়। সেন্ট পিটার্সবার্গের অন্যান্য ভবনের মতো ধূসর না এটি, বরং এর বাহিরটা বিভিন্ন রঙের। যা মস্কোর ক্রেমলিনে দেখা গেছে। এর কাজ শুরু হয় ১৮৮৩ সালে, শেষ হয় ১৯০৭ সালে। তখন ক্ষমতায় ছিলেন রাজা দ্বিতীয় নিকোলাস। দেয়ালজুড়ে জিশু ও মেরীর চিত্র, যা মোজাইকে তৈরি। এই গীর্জার প্রায় ৮০০০ বর্গমিটার জুড়ে মোজাইক করা। রক্ষণাবেক্ষণের কাজে নিয়োজিত এক নারী বলেন, পৃথিবীর অন্য যে কোনো গীর্জার চেয়ে বেশি মোজাইক এই গীর্জায়। মোজাইক দিয়ে বাইবেলের নানা চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ১৯৩০ সালে সোভিয়েত সরকার গীর্জাটি বন্ধ করে দেয় এবং সংস্কার করে। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এই গীর্জার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। জার্মান সৈন্যদের লেনিনগ্রাদ দখলের সময় বেশ বড় রকম ধাক্কা খায় এই গী��্জা। এখনো একটি দরজা ভাঙা আছে, সেখানে একটি বাক্সে অর্থ তোলা হচ্ছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: ভারমুক্ত ক্রোয়েশিয়া নাকি দুর্বার ফ্রান্স? 'আমি ছিলাম বিশ্বকাপের হানি শট' 'নারী, মদ, ভাস্কর্য সব দারুণ, দারুণ আয়োজন রাশিয়ার' এই গীর্জার প্রায় ৮০০০ বর্গমিটার জুড়ে মোজাইক করা সেন্ট পিটার্সবার্গের অন্যতম বড় ট্যুরিস্ট স্পট 'চার্চ অন দা স্যাভিওর অফ স্পিল্ড ব্লাড'। আর এর পাশে ফিফা ফ্যান জোন। +text: স্নাতক ডিগ্রী লাভের দিন নার্গিস লোকের কথায় কান না দিয়ে সেদিন তার বাবা ভুল করেননি, সেটা প্রমাণ করাই এখন ২১ বছর বয়সী নার্গিসের একমাত্র লক্ষ্য। মেয়েদের পড়াশুনা নিয়ে দেশব্যাপী সচেতনতার কাজ করেন তিনি, আর এ বছর তিনি বিবিসির ১০০ নারী আয়োজনের একজন নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৯৭ সালে পরিবারের পাঁচ নম্বর মেয়ে হয়ে জন্মাবার পরপরই আমার ফুফু এবং অন্য আত্মীয়রা আমার মাকে অনেক চাপ দিয়েছিল, যেন তিনি আমার বাবাকে দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি দেন। পুত্র সন্তান লাভের আশায় আফগানিস্তানে দ্বিতীয় বা তৃতীয় বিয়ে খুবই সাধারণ ঘটনা। বিশেষ করে অনেকেই বিশ্বাস করে, পুনরায় বিয়ে করলে পুরুষের পুত্র সন্তান লাভের নতুন সুযোগ তৈরি হয়। আমার মা অনুমতি দিতে রাজি হননি। আরো পড়ুন: বাংলাদেশের যে নারী বিবিসির ১০০ নারীর তালিকায় ১০০ নারী: ক্যামেরার পেছনে ছায়ায় লুকিয়ে যারা বাবার সঙ্গে নার্গিস তখন সবাই বাবাকে পরামর্শ দিলো কারো ছেলে বাচ্চার সঙ্গে আমাকে যেন বদলে নেয়া হয়। আশ্চর্য, আমাদের গ্রামে এমন একটা পরিবার পাওয়াও গেলো, যারা নিজেদের ছেলে বাচ্চাকে আমাদের পরিবারে দিয়ে দিতে রাজিও হয়েছিল। বিনিময়ে আমাকে দিয়ে দিতে হত তাদের। এভাবে সন্তান পরিবর্তনের কথা আফগানিস্তানে সচরাচর শোনা যায় না। কিন্তু উপার্জনক্ষম হওয়ায়, এখানে ছেলে বাচ্চার কদর সবসময়ই বেশি। কিন্তু আমার বাবার মন-মানসিকতা ছিলো অন্যদের চেয়ে একেবারেই আলাদা। তখন বাবা বলেছিলেন তিনি কিছুতেই আমাকে অন্য কারো কাছে দিয়ে দেবেন না, কারণ তিনি আমাকে ভালোবাসেন, আর একদিন সবার কাছে তিনি প্রমাণ করবেন ছেলেরা যা পারে মেয়েরাও তাই-ই করতে পারে। আমার পরিবারের জন্য সেটা খুব দুঃসময় ছিলো। পুত্র সন্তান জন্ম দিতে না পারায় আমার মাকে নিয়মিত খোটা ও কটু মন্তব্য শুনতে হতো। বিবিসি নিউজ বাংলার অন্যান্য খবর: দলীয় প্রার্থীদের মাথাব���যথার কারণ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা? যে রায়ের পর নড়েচেড়ে বসেছে বাংলাদেশ সরকার সংসদ নির্বাচন: সব দল সমান সুযোগ পাচ্ছে কি? ১৭ বছরের ছেলেকে বিয়ে করায় ভারতীয় নারী গ্রেফতার তরুণদের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন নার্গিস বাবা সামরিক বাহিনীতে কাজ করতেন। তিনি সোভিয়েত সমর্থিত সরকারের সময় সেনা বাহিনীতে ছিলেন আর আমার জন্মের সময়টাতে ধর্মীয় মৌলবাদীরা ক্ষমতায় ছিলো। ফলে গ্রামের বহু পরিবারই আমাদের সঙ্গে মিশত না। কিন্তু তাতেও বাবা দমে যাননি। দেশ ছেড়ে পালিয়ে পাকিস্তানে ১৯৯৮ সালে যখন তালিবান আমাদের জেলার নিয়ন্ত্রণ নিলো, তখন বাবা পালিয়ে পাকিস্তানে চলে যান। কিছুদিন পরে আমরাও দেশ ছেড়ে তার কাছে চলে যাই। সেখানে জীবনযাপন অনেক কঠিন ছিলো। বাবা একটা জুতার কারখানার ম্যানেজারের কাজ পেলেন। সেখানেই বোধহয় ঘটলো তাদের জীবনের সেরা ঘটনা, পাঁচটি মেয়ের পর তাদের একটি ছেলে সন্তান হলো। দেশে ফেরা তালিবান শাসনের অবসান হলে ২০০১ সালে আমরা আফগানিস্তানে ফিরে আসি। নারী শিক্ষা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির কাজ করেন তিনি কিন্তু গত কয়েক বছরে আমাদের ঘরবাড়ি বেদখল হয়ে গিয়েছিল। যে কারণে আমাদের থাকার জায়গা ছিলো না, আমরা চাচার বাড়িতে থাকতাম। আর রক্ষণশীল সমাজের মধ্যে থেকেও আমি আর আমার বোন পড়াশোনা চালিয়ে যেতে থাকি। দুই বছর আগে আমি কাবুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ নম্বর নিয়ে পাবলিক পলিসির ওপর স্নাতক ডিগ্রী লাভ করি। আর সবকিছুতে বাবা আমাকে সমর্থন জুগিয়ে গেছেন। কয়েক বছর আগে আমি আর আমার বোন একবার ক্রিকেট খেলা দেখতে গিয়েছিলাম। যেহেতু এদেশে মেয়েরা খুব বেশি মাঠে গিয়ে খেলা দেখেনা, সে কারণে আমাদের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুব আলোচিত হয়েছিল। কিন্তু সেটা নিয়ে অনেক সমালোচনা শুনতে হয়েছিল আমাদের। কেউ বলেছিল আমরা নির্লজ্জ, কেউ বলেছিল আমরা সমাজে বেহায়াপনা ছড়াতে চাই, কেউ কেউ এমনকি আমাদের আমেরিকার চর বলেও গালি দিয়েছিল। কিন্তু ফেসবুকের কমেন্ট দেখে বাবা আমাকে বলেছিলেন, "মূর্খদের পাত্তা না দিয়ে তুমি ঠিক কাজটাই করেছো। জীবন খুব ছোট, যতটা পারো উপভোগ করো।" বোন আর ছোট ভাইয়ের সঙ্গে নার্গিস ক্যান্সারে ভুগে এ বছরের শুরুতে বাবা মারা গেছেন, আর আমি আমার সব সময়ের সবচেয়ে বড় আশ্রয় হারিয়েছি। মেয়েদের স্কুল তিন বছর আগে আমি যখন মেয়েদের জন্য একটা স্কুল খুলতে চাইলাম, বাবা আমাকে বলেছিলেন, আমাদের সমাজ বাস্তবতায় সেটা প্রায় অসম্ভব একটি কাজ হবে। তাছাড়া নিরাপত্তার কারণে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া ছেলেদের জন্য কঠিন কাজ। সেজন্য তিনি ভেবেছিলেন ওটাকে যদি মাদ্রাসা বা এরকম কিছু নাম দেয়া যায়, তাহলে হয়তো তেমন বাধার মুখে পড়তে হবে না। এর মধ্যে আমি নারী শিক্ষা, স্বাস্থ্য আর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করে এমন বেশ কয়েকটি এনজিও বা বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেছি। আমার অনেক দিনের স্বপ্ন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়বো। বই পড়তে খুব ভালো লাগে আমার—বিশেষ করে পাওলো কোয়েলহোর লেখা। আপোষ করবো না আমি নিজের পছন্দে বিয়ে করতে চাই, আমার পরিবার আমাকে সেই অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু আফগানিস্তানে লোকজন সেটা খুব ভালো চোখে দেখে না। আমার বাবার মত গুণাবলীর অধিকারী কাউকে চাই আমি, যিনি মন মানসিকতায় আমার বাবার মত হবেন। কারণ পরিবার খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যপার, অনেক সময় দেখা যায় হয়তো আপনি সব দিক দিয়ে ভালো একজন মানুষকে বিয়ে করলেন, কিন্তু তার পরিবারের সঙ্গে আপনি মানিয়ে নিতে পারলেন না। আমি চাই আমার জীবন সঙ্গী আমাকে আমার লক্ষ্যে পৌঁছুতে সাহায্য করবেন। পরিবারের পঞ্চম মেয়ে সন্তান হিসেবে যখন আফগানিস্তানের এক গ্রামে নার্গিস তারাকির জন্ম হয়, তার বাবাকে সবাই পরামর্শ দিয়েছিল একটি ছেলে বাচ্চার সাথে মেয়েকে বদলে নিতে। +text: ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি কি সুদূর পরাহত? আয়োজক, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বিশেষ অতিথি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যেন একে অপরের ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মতো মনে হচ্ছিল। তাদের চারপাশে থাকা অতিথিরা হাততালি দিচ্ছিলেন। ইসরায়েলের জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যা করেছেন, সেজন্য হাততালির বড় অংশটি ছিল তার জন্য। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েলের ১৯৪৮ সালের স্বাধীনতা দিবসের মতোই এই দিনটাকে স্মরণে রাখা হবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি স্থাপনের জন্য তিনি নতুন একটি উপায় খুঁজে পেয়েছেন। ইসরায়েল যে নিরাপত্তা চায়, সেটা তারা পাবে আর ফিলিস্তিনিরা যে রাষ্ট্র চাইছে, তারা সেটাও পাবে। এ পর্যন্ত সব ঠিকই- কিন্তু সমস্যা হলো, মি. ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ইসরায়েলের জন্য সবকিছুই রয়েছে আর ফিলিস্তিনিদের জন্য সামান্যই প্র���্তাব করা হয়েছে। এমন একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের কথা প্রস্তাব করা হয়েছে যার যথাযথ সার্বভৌমত্ব থাকবে না, চারদিকে ইসরায়েলের ভূখণ্ড দ্বারা বেষ্টিত থাকবে আর সবসময়েই ইহুদি বসতি বিস্তারের ঝুঁকির মধ্যে থাকবে। আরো পড়ুন: ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে হাজারো ইসরায়েলি বাস করে কেন জেরুজালেম: ট্রাম্পের স্বীকৃতির পর বিশ্বে নিন্দার ঝড় ফিলিস্তিনের যে এলাকা ইসরায়েল রাষ্ট্রভূক্ত করতে চায় আরবদের হটিয়ে যেভাবে ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শান্তি একবারই সম্ভব বলে মনে হয়েছিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হয়তো কোনরকম সন্দেহ ছাড়াই বিশ্বাস করেন যে, তিনি 'শতবছরের মধ্যে সবচেয়ে সেরা প্রস্তাব' করেছেন। মি. নেতানিয়াহু এবং তার সরকারের জন্য এটা চমৎকার একটি প্রস্তাব। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের ব্যাপারে বছরের পর বছর ধরে শান্তি আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের সবসময়েই প্রাধান্য ছিল ইসরায়েলের ইচ্ছা, সীমাবদ্ধতা এবং নিরাপত্তার বিষয়গুলো। কিন্তু একের পর এক প্রেসিডেন্ট মেনে নিয়েছেন যে, শান্তির জন্য দরকার ইসরায়েলের পাশাপাশি একটি টেকসই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র, এমনকি যদি দুই রাষ্ট্রের সমান সার্বভৌমত্ব নাও থাকে। ইসরায়েল যুক্তি দিতে চায় যে, বেশ কিছু ভালো প্রস্তাবেও রাজি হয়নি ফিলিস্তিন। ফিলিস্তিনি আলোচকরা বলেন, তারা অনেক ছাড় দিয়েছে। এমনকি তাদের নিজেদের মাতৃভূমির ৭৮ শতাংশ জায়গায় ইসরায়েলকে মেনে নিয়েছে। প্রায় ৩০ বছর আগে একবার শান্তিচুক্তির কাছাকাছি গিয়েছিল আলোচনা। নরওয়েতে উভয় পক্ষের একের পর এক গোপন আলোচনার পর, ১৯৯৩ সালে হোয়াইট হাউজের লনে প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সভাপতিত্বে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অসলো শান্তি প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়ে ওঠে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: উহান থেকে বিদেশিদের সরিয়ে নেয়া শুরু ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা: কার জন্য কী? ধর্মান্তরিত পরিবারকে ভারতে ফেরত পাঠানোর নেপথ্যে আড়ং কর্মীর মোবাইলে চেঞ্জিং রুমের শতাধিক ভিডিও হোয়াইট হাউজে দুই নেতার ঐতিহাসিক করমর্দন অনেক আশাবাদ তৈরি করেছিল। বামে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী আইজ্যাক রবিন, মাঝে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, ডাবে ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাত ইসরায���েলের যুদ্ধকালীন নেতা আইজ্যাক রবিন এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনের নেতা ইয়াসির আরাফাত আর লড়াই না করে শান্তি আলোচনা অব্যাহত রাখার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। দুই চিরশত্রু পরস্পরের করমর্দন করেন। রবিন, আরাফাত এবং ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিমন পেরেজ পরবর্তীতে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। এটা ছিল একটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত। ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েল রাষ্ট্র মেনে নেয়। ইসরায়েলিরা মেনে নেয় যে, ফিলিস্তিনি লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছে। কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি তাতে ফাটল ধরে। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একে ইসরায়েলের জন্য একটি মারাত্মক হুমকি বলে বর্ণনা করেন। দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বসতি তৈরির কার্যক্রম বাড়িয়ে দেয় ইসরায়েলিরা। কোন কোন ফিলিস্তিনি, যেমন শিক্ষাবিদ এডওয়ার্ড সাইদ অসলো শান্তি চুক্তিকে 'আত্মসমর্পণ' বলে নিন্দা করেন। ফিলিস্তিনি জঙ্গি গোষ্ঠী হামাস, দ্যা ইসলামিক রেজিট্যান্স মুভমেন্ট ইহুদিদের হত্যা করার জন্য আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী পাঠায় এবং চুক্তিকে নাজুক করে তোলে। ইসরায়েলের পরিস্থিতিও খারাপ হয়ে ওঠে। আইজ্যাক রবিনকে তার কয়েকজন সহযোগী নাৎসিদের চেয়েও খারাপ বলে নিন্দা করেন এবং বিক্ষোভের সময় তাকে এসএসের অফিসার হিসাবে চিত্রিত করেন। ১৯৯৫ সালের চৌঠা নভেম্বর ইহুদি উগ্রপন্থীদের দ্বারা তাকে হত্যার মাধ্যমে কয়েকমাসের উত্তেজনার অবসান ঘটে। ইসরায়েল ফিলিস্তিনি আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন জেরুজালেম শহর আত্মসমর্পণের দলিল আইজ্যাক রবিনের হত্যাকারী চেয়েছিল যেন শান্তি প্রক্রিয়া বাতিল হয়ে যায়। তার ভাবনা ছিল, এর জন্যে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো, যে ব্যক্তি সেটি বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছেন, তাকেই নির্মূল করে দেয়া। তিনি ঠিকই ভেবেছিলেন। তবে আইজ্যাক রবিন যদি বেঁচেও থাকতেন, তাহলেও অসলো চুক্তিটি হয়তো ব্যর্থ হতো। ছোটখাটো অনেক কারণ থেকে যার পেছনে জেরুজালেমের মতো অনেক বড় কারণও রয়েছে। উভয় পক্ষের নেতারা সমঝোতার চেয়ে দ্বন্দ্বকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন। সেই সঙ্গে রয়েছে ইসরায়েলের অব্যাহত দখল আর ফিলিস্তিনিদের সহিংস বিরোধিতা। ঘোষণাটি এমন সময়ে দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, যা মি. ট্রাম্প এবং মি. নেতানিয়াহুর জন্য রাজনৈতিক এবং আইনগত, উভয় দিক থেকেই সুবিধাজ��ক হয়েছে। দুইজনেরই সামনে নির্বাচন রয়েছে। সেই সঙ্গে ইমপিচমেন্ট, অপরাধ ও বেআইনি কাজের অভিযোগে সেনেটে শুনানির কারণে চাপের মধ্যে রয়েছেন মি. ট্রাম্প। দুর্নীতি, ঘুষগ্রহণ এবং বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগের মুখে রয়েছেন মি. নেতানিয়াহু। আমেরিকার শক্তি বাড়ানোর কোন সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি বিশ্বাস করেন যে, আমেরিকার সামরিক শক্তি এবং অর্থনীতি তাকে তার ইচ্ছা প্রয়োগ করার ক্ষমতা দিয়েছে। অতীতে পুরোপুরি শান্তি অর্জন করা যায়নি, এমন সব পুরনো ধ্যানধারণাকে ধ্বংস করে দিয়ে নতুন পথে হাঁটতে চান ডোনাল্ড ট্রাম্প। ডোনাল্ড ট্রাম্পের এসব প্রস্তাবনার মধ্যে বেশ কিছু অস্বস্তিপূর্ণ বিষয় এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। যেমন জাতিসংঘের ২৪২ রেজ্যুলিশনে বলা হয়েছে যে, যুদ্ধের মাধ্যমে দখল করা কোন ভূমি অধিগ্রহণ করা যাবে না অথবা আন্তর্জাতিক আইনে বলা হয়েছে যে, কেউ দখল করা জমিতে বসতি তৈরি করতে পারবে না। ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাব ঘোষণার পর প্রায় সঙ্গে সঙ্গে নাকচ করে দিয়েছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনি অধিকার ও আশা বিক্রির জন্য নয়। আসলে ফিলিস্তিনিদের বলে দেয়া হয়েছে, হয় তোমরা এটা গ্রহণ করো না হলে চলে যাও। তাদেরকে একটি আত্মসমর্পণের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে যে, ইসরায়েল বিজয়ী হয়েছে এবং তার আমেরিকান বন্ধুরা ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করে দিচ্ছে। ফিলিস্তিনিরা যদি এটা প্রত্যাখ্যান করে, তাহলেও ইসরায়েলের যা পাবার, সেটা তারা পেয়ে গেছে এবং তারা হয়তো আরো খারাপ হবে। সম্ভাবনা রয়েছে যে, ফিলিস্তিনিরা আরো ক্ষুব্ধ, বেপরোয়া এবং আশাহীন হয়ে উঠতে পারে। উত্তেজনাপ্রবণ এই বিশ্বে এটা খুবই বিপজ্জনক। বলা যায়, এই পরিকল্পনা দিয়ে আসলে জুয়া খেলছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজের পরিবেশ সংবাদ সম্মেলনের তুলনায় যেন একটি পার্টি হয়ে উঠেছিল। +text: হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর ভিড় বেড়েই চলেছে। অভিযোগের তীর প্রধানত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এবং সরকারের দিকে। অনেকেই সরসারি তাদের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলছেন। বিশেষজ্ঞদের অনেকেও বলছেন, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে যথাসময়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলেই এই পরিস্থিতি হয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের কোনা কারণ নে���, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৩৯০ জন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন গত ২৪ ঘন্টায়। এই তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তাদের হিসাব অনুযায়ী এ নিয়ে এবছর সাড়ে নয় হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। বেসরকারিভাবে এই সংখ্যা আরও অনেক বলা হচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীদের ভিড় বেড়েই চলেছে। আতঙ্ক আর উদ্বেগের পরিস্থিতি কেন হলো, এর জন্য দায়ী কে - এসব প্রশ্ন এখন উঠছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শাহীনা তাবাসসুম বলেছেন, এডিশ মশা মারার ক্ষেত্রে ব্যর্থতার কারণে পরিস্থিতি এত খারাপ হয়েছে বলে তার ধারণা। ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা মারতে ব্যর্থতার অভিযোগ এখন জোরালো হয়েছে। "মশা দ্বারা এটা একজন থেকে আরেকজনের মাঝে ছড়াচ্ছে। এটা হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়াচ্ছে না। এখানে ট্রান্সমিশন সাইকেলটা বন্ধ করতে চাইলে মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।এটাতে ব্যর্থতা আছে, যারই ব্যর্থতা হোক।" সরকারের রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং সংক্রমণ ব্যধি নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক ড: সনিয়া তাহমিন বলছিলেন, ২০০০ সালে ডেঙ্গু ভাইরাস ধরা পরার পর থেকে বাংলাদেশে এর চিকিৎসা এগিয়েছে। কিন্তু মশা মারায় ব্যর্থতা থাকলে এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না বলে তিনি মনে করেন। "আমরা প্রিভেশন না করে আমরা ট্রিটমেন্টের দিকে নজর দিয়েছি। কিন্তু প্রেভেশনের ব্যাপরটায় হেলথ সেক্টর যেটা করতে পারে বা করছি আমরা, সেটা হচ্ছে, ডাক্তারদের ট্রেনিং দিচ্ছি। মানুষকে সচেতন করছি। কিন্তু মশা মারতে না পারলে সমাধান হবে না। সিটি করপোরেশনের এটা দায়িত্ব ছিল। আমি বলবো এই ম্যানেজমেন্টে আমরা ব্যর্থ হয়েছি।" এখন ব্যর্থতার অভিযোগের ক্ষেত্রে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে সময়মতো কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ার প্রশ্ন অনেকে জোরালোভাবে তুলছেন। রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মশা মারার ঔষধের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। রাজনৈতিক অঙ্গনেও নানা প্রশ্ন উঠছে। তবে ঢাকার দুই মেয়র ব্যর্থতার অভিযোগ মানতে রাজি নন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলামও অভিযোগ নাকচ করে বলেছেন, সময়মতোই তারা কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুকে নিয়ে অপেক্ষায় মা। আরও পড়তে পারেন: ডেঙ্গুজ্বর সম্পর্কে ১০টি তথ্য জেনে নিন বাংলাদেশে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে এখন ১১৪ বাংলাদেশে গণপিটুনিতে হত্যার বিচার হয়না কেন? "এখানে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কম। অন্য দেশের সাথে তুলনা করলে এটা দেখা যায়। থাইল্যান্ডে বা ভারতে আমাদের থেকে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। এখানে প্রতিদিনই মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছে এবং ভাল হচ্ছে। আবার নতুন নতুন কেউ কেউ আক্রান্ত হচ্ছে। পরিস্থিতি মহামারি রূপ নেয়নি। নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।" কিন্তু মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য যথাসময়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। অনেকে বলেছেন, এই ব্যর্থতার দায় সরকারের। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম বলেন, "আমি এই বিষয়ের সাথে একমত না। কারণ মশাতো নিধন হচ্ছে। মশার ডেনসিটি যথেষ্ট কমেছে। এটা সবাই স্বীকার করবেন। এখন এডিস মশাটা পরিস্কার পানিতে বাড়ির আঙিনায় বা ভিতরে জন্মায়। এজন্য আমরা মানুষকে সচেতন করার কর্মসূচিও জোরদার করেছি।" "মশা মারা ঔষধের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলেও আমরা সেই প্রশ্নের কোন ভিত্তি পাইনি।" এদিকে, পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকার দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের মন্তব্য নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সরকার ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। ফলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলন করে পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য তুরে ধরেন। "আমাদের জনগণ ডেঙ্গু নিয়ে আতংকে আছে, উদ্বেগের মধ্যে আছে। আসলে কাজটা আমাদের সমন্বিতভাবে করতে হবে।" ওবায়দুল কাদের উল্লেখ করেন যে, সরকার এখন পরিস্থিতি সামাল দিতে মশার মারা অভিযান জোরদার করার পাশাপাশি তাদের পদক্ষেপে সাধারণ মানুষকেও সম্পৃক্ত করতে চাইছেন। বাংলাদেশে ডেঙ্গু নিয়ে জনমনে উদ্বেগ যেমন বাড়ছে, সেই সাথে এ ধরণের বিপজ্জনক পরিস্থিতির জন্য দায়ী কে সেই প্রশ্ন জোরালো হচ্ছে। +text: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাই রাশিয়াকে পশ্চিমা দেশগুলোর ভয়ের কোন কারণ নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন। মি. পুতিন অভিযোগ করেছেন যে, অনেক দেশই সামরিক,অর্থনৈতিক ও অন্যান্য সুবিধা পেতে রাশিয়া ভীতিকে একটি অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে। কিন্তু বাস্তবে এর কোন ভিত্তি নেই। একটি ম্যাগাজিনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মি. পুতিন বলেন, এখনকার পৃথিবী একটাই এগিয়ে গেছে যে, কোন দেশই এত বড় মাপের যুদ্ধে আর জড়িত হতে আগ্রহী হব�� না। রাশিয়ার হুমকির বিষয়টি শুধুমাত্র অসুস্থ একজন মানুষের দুঃস্বপ্নেই আসা সম্ভব বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন। রাশিয়ান সমরাস্ত্র ইউক্রেন সংঘাতের পর থেকেই, রাশিয়ার হুমকি মোকাবেলা করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পূর্বাঞ্চলীয় দেশগুলোতে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে নেটো। ইউক্রেনে বিদ্রোহীদের রাশিয়া সহযোগিতা করছে বলে নেটো অভিযোগ করেছে। রাশিয়ার যেকোনো হামলা প্রতিরোধে, এ মাসের শুরুর দিকে একটি মহড়া আয়োজন করে নেটো, যেখানে সামরিক প্রযুক্তির পাশাপাশি সাইবার প্রযুক্তিও ব্যবহার করা হয়। ইউক্রেনের সরকার বরাবরই অভিযোগ করছে, সেদেশের বিদ্রোহীদের সহায়তা করছে রাশিয়া, যদিও দেশটি সে অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এর জের ধরে রাশিয়ার উপর বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এমন পটভূমিতেই আজ শিল্পোন্নত দেশগুলো জার্মানি মুনিষে একটি বৈঠকে বসতে যাচ্ছে, যেখানে রাশিয়াকে ডাকা হয়নি। নেটোর জন্য রাশিয়া কোন হুমকি নয় বলে ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। +text: বিজনেস ক্লাসের টিকেট কেটে আসন পেলেন না নির্বাচন কমিশনার। (প্রতীকী ছবি) রিজেন্ট এয়ারওয়েজের চিফ অপারেটিং অফিসার আশিষ রায় চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে এটি নিশ্চিত করেছেন। যাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন পার্সার, কেবিন ক্রু এবং গ্রাউন্ড স্টাফ। কী ঘটেছিল তার সিট নিয়ে? গত ২৭শে জুন স্ত্রীকে সাথে নিয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার সময় রিজেন্ট এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে বিজনেস ক্লাসে টিকেট কাটেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তা বলছেন, ওই ফ্লাইটে উঠে নির্ধারিত সিট পাননি মি. তালুকদার। চিফ অপারেটিং অফিসার মি. চৌধুরী জানান, "তিনি [মি. তালুকদার] গিয়ে দেখেন যে তার জন্য নির্ধারিত সিটে পুলিশের মহাপরিদর্শক বসে আছেন।" পরে নির্বাচন কমিশনারকে ইকোনমি ক্লাসের সিটে বসানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাকে 'সম্মানহানিকর' উল্লেখ করে মি. তালুকদার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ দেন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সচিব মোহাম্মদ আলমগীর বিবিসি বাংলাকে বলেন, "ঘটনাটি সম্পর্কে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে অভিযোগ করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। নির্বাচন কমিশন বিষয়টি দেখছে।" এদিকে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে রিজেন্ট এয়ারওয়েজের কর্মকর্তা মিস্টার চৌধুরী বলেন, "উনি (মি. তালুকদার) যখন ইকোনমি ক্লাসে বসে গেছেন, তখন ক্রু নাকি বলছে, স্যার সিটটা পরিবর্তন করে দিচ্ছি। কিন্তু তখন উনি বলেছেন যে, সেই মুহূর্তে তিনি আর সিট পরিবর্তন করতে চান না।" কী বলছে রিজেন্ট এয়ারওয়েজ? এ ঘটনার পর এয়ারওয়েজটির পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের কাছে আনুষ্ঠানিক দুঃখ প্রকাশ করার জন্য যোগাযোগ করার কথা জানিয়েছেন সংস্থাটির কর্মকর্তা আশিষ রায় চৌধুরী। তিনি বলেন, "উনার কাছে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করতে চাই। কিন্তু উনি আমাদের এখনো সময় দেননি।" "তিনি [মি. তালুকদার] যেটা বলেছেন সেটা ঠিক। উনি যখন বসে গেছেন তখন কেন উনি পরিবর্তন করবেন? আগে কেন তার সিটটা ছিলো না? কেবিন সার্ভিস এবং গ্রাউন্ডে যারা আছে তাদের দায়িত্ব উনার সিটটা ঠিক রাখা।" রিজেন্ট এয়ারওয়েজের অফিসে অভ্যন্তরীণভাবে এ অভিযোগের বিষয়ে এখনো তদন্ত চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, "সবার বক্তব্য শোনা হচ্ছে। এটার একটা কঠোর শাস্তি দেয়া হবে। আমরা অত্যন্ত দুঃখিত যে এধরণের ঘটনা ঘটেছে।" আরো পড়তে পারেন: হেডিংলির আকাশে কাশ্মীর ব্যানার নিয়ে তোলপাড় বিমান দুর্ঘটনা: নিরাপত্তার জন্যে কী করছে কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ বিমান দুর্ঘটনা: ১৮ জন হাসপাতালে পুরোনো একটি ছবিতে নির্বাচন কমিশনের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। 'ভিআইপিকে সম্মান দেয়া নৈতিক দায়িত্ব' এদিকে, ভিআইপি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে রিজেন্ট এয়ারওয়েজের কোন নিয়ম আছে কিনা এমন প্রশ্নে মিস্টার চৌধুরী বলেন, "ভিআইপির জন্য বিশেষ কোন কিছু নাই। তবে একজন ভিআইপিকে সম্মান দেয়া নৈতিক দায়িত্ব।" তিনি বলেন, "ওনার অভিযোগ ঠিক আছে। ওনার জায়গায় আমি থাকলে আমিও একই অভিযোগ করতাম। কারণ আমার সিটে অন্য কেউ কেন বসবে?" "এখানে ব্যর্থতাটা হচ্ছে, যে পার্সার ছিল এবং যে ক্রু ছিল তাদের। আর গ্রাউন্ড সার্ভিসের কথা হচ্ছে তাকে নিয়ে গিয়ে অন্য সিটে বসানো হল কেন?" তবে মি. চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় কোন একক ব্যক্তিকে দোষারোপ করার সুযোগ নেই। কারণ ঘটনাটি আসলে এয়ারওয়েজের অব্যবস্থাপনার কারণে ঘটেছে। তিনি বলেন, "এখানে ব্যক্তি হিসেবে কাউকে চার্জ করার কথা না। কারণ যিনি ওনার সিটে বসে ছিলেন তিনি তো আর জোর করে গিয়ে বস��ননি। উনি কোনদিন বলেনও নি যে, আমাকে এই সিটটা দেন। এটা পুরোপুরি আমাদের মিস ম্যানেজমেন্ট।" বিমানযোগে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম থেকে যাওয়ার সময় একটি প্রাইভেট এয়ারলাইন্সের এক ফ্লাইটে টিকেট কেটেও নির্ধারিত আসন পাননি নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। এ নিয়ে তার করা অভিযোগের পর চার কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে রিজেন্ট এয়ারওয়েজ। +text: আমেরিকা, ইউরোপ থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ডোজ টিকার আনার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। মন্ত্রী পরিষদের বৈঠক শেষে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সাংবাদিকদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, "এ বিষয়টি দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, আমাদের সেকেন্ড ডোজের বিষয়টি নিয়ে আমরাও চিন্তিত, আপনারাও চিন্তিত আছেন।" মি. মালেক বলেন, দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেয়ার কর্মসূচি আর এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন চলতে পারে। বাংলাদেশে গত ৭ই ফেব্রুয়ারি থেকে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। এরই মধ্যে প্রায় ৫৮ লাখ ২০ হাজারের মতো মানুষ প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছে। আর দুটি ডোজই নিয়েছেন সাড়ে ৩৬ লাখের মতো মানুষ। ভারতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পর দেশটি টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। ফলে বাংলাদেশের টিকা পাওয়ার বিষয়টি অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে। তবে সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, টিকার সরবরাহ ঠিক রাখতে সরকার সব ধরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরইমধ্যে ভারতের সাথে কথা হয়েছে। তাদের কাছে এরইমধ্যে বাংলাদেশের তিন কোটি ডোজ টিকার অর্ডার আছে। যার মধ্যে মাত্র ৭০ লাখ বাংলাদেশ পেয়েছে। আরো পড়ুন: ভারত ছাড়াও রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভ্যাকসিন পাওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। অনেক জায়গায় অগ্রগতিও হয়েছে। তবে চূড়ান্ত হলেই সেটা জানানো হবে বলে জানান মন্ত্রী। বাংলাদেশে এখন অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকা দেয়া হচ্ছে টিকা পাওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়, অর্থমন্ত্রণালয়সহ বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় এক সাথে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া টিকা কেনা ছাড়াও সঠিক প্রস্তাবনা আসলে বাংলাদেশেও টিকা উৎপাদনের নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মি. মালেক। তিনি বলেন, টিকা উৎপাদন করতে হলে সক্ষমতা রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। সেই সাথে ওষুধ প্রশাসনের অনুমোদনও দরকার হবে। এরকম কিছু প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আলোচনা চলছে তবে এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। সক্ষমতা থাকলেও বাংলাদেশে টিকা উৎপাদন শুরু করতে হলে কমপক্ষে ৫-৬ মাস সময় দরকার বলে জানানো হয়। মন্ত্রী বলেন, রাশিয়ার সাথে টিকা আনার বিষয়ে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া চীন থেকে আড়াই লাখ ডোজ টিকা পাওয়া যাবে। এসব টিকা যারা অনেক বেশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে এমন ব্যক্তি এবং ফ্রন্ট লাইনারদের দেয়া হবে। মি. মালেক বলেন, "যেখান থেকে টিকা আগে পাওয়া যাবে সেখান থেকেই নেয়া হবে। দুটো এক সাথে পেলে, দুটোই নেয়া হবে।" এদিকে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভেরিয়্যান্টের কথা উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশেও কয়েক জনের মধ্যে এই ভেরিয়্যান্ট পাওয়া গেছে। তবে কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, এটি বাংলাদেশে খুব বেশি ছড়ায়নি। সরকারের সঠিক সময়ে নানা পদক্ষেপ, ভারতের সাথে সীমান্ত বন্ধ করার সিদ্ধান্ত কারণে ভারতীয় ভেরিয়্যান্ট থেকে নিরাপদে রয়েছে বাংলাদেশ। এই ভেরিয়্যান্ট যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে তার জন্য ভারতের অবস্থা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সীমান্ত আগামীতেও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া দেশের ভেতরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দূরপাল্লার বাস, লঞ্চ এবং ট্রেন চলাচল আরো বন্ধের প্রস্তাব করা হবে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। চলতি বছর মার্চের শেষের দিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হু হু করে বাড়তে থাকায় গত ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য সরকার প্রথম বিধিনিষেধ জারি করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ই এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরেক দফা বিধিনিষেধের সময়সীমা বাড়ানো হয়। পরে কয়েক দফায় আরো বাড়িয়ে সর্বশেষ ২৩শে মে মধ্যরাত পর্যন্ত লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানো হয়। বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া নিশ্চিত করার বিষয়টি নিয়ে সরকার চিন্তিত। +text: বর্ণাঢ্য এই অনুষ্ঠানের নাম আরিরাং ম্যাস গেমস। চলবে পুরো সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে। উত্তর কোরিয়ার ৭০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান। এতে অংশ নিচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। অতীতে জাতিসংঘের পক্��� থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে এসব অনুষ্ঠানে শিশুদেরকেও অংশ নিতে বাধ্য করা হয়। এই গেমস আসলে প্রচারণার এক বিশাল উৎসব। বিভিন্ন রঙের কার্ড দিয়ে অংশগ্রহণকারীরা তৈরি করেন বিশাল বিশাল প্রতিকৃতি। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় শক্তি তুলে ধরতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন। বিদেশি পর্যটকদের কাছে খুব জনপ্রিয় এই অনুষ্ঠান। এটি রাজস্ব আয়েরও একটি উৎস। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বেইজিং-এর সাথে অতিরিক্ত ফ্লাইট চালু করা হয়েছে। সবশেষ এই গেমসের আয়োজন করা হয়েছিল ২০১৩ সালে। অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই শিশু। জাতিসংঘ বলছে, এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে শিশুদের বাধ্য করা হয়। প্রত্যেকটি ইভেন্টের টিকেটের দাম প্রায় ৯৩৩ ডলার। উত্তর কোরিয়ায় রবিবার থেকে শুরু হয়েছে এক বিশাল প্রচারণা উৎসব যেখানে ছিল জমকালো কিছু প্রদর্শনী। বিশ্বের আর কোথাও এরকম অনুষ্ঠান দেখা যায় না। +text: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সর্বোচ্চ পর্যায়ের সতর্কবার্তা দিয়েছে। সংস্থাটি বলছে এটি এখন একটি "আন্তর্জাতিক পর্যায়ের জনস্বাস্থ্য সংকট।" জেনিভাতে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গিব্রাইয়াসুস এই জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেছেন। তবে সীমান্ত বন্ধ করে দেবার ব্যাপারে এখনই কিছু বলা হয়নি। সংস্থাটির পক্ষ থেকে তার সর্বোচ্চ পর্যায়ের সতর্কবার্তা হিসেবে ঘোষণাটি এসেছে। এমন সতর্কবার্তা এর আগে এ পর্যন্ত চারবার দিয়েছে সংস্থাটি। তার একটি ছিল পশ্চিম আফ্রিকাতে ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত চলা ইবোলার প্রাদুর্ভাবে এগারো হাজার মানুষের মৃত্যুর পর। ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোতে ইবোলা সংক্রমণে এ পর্যন্ত ১৬০০ লোকের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধান মি. গিব্রাইয়াসুস সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, "বিশ্ববাসীর নজর দেয়ার সময় এসেছে।" এই ঘোষণার ফলে সেটি হয়ত কিছুটা সম্ভব হবে বলে তিনি নিজেই মন্তব্য করেছেন। টেড্রোস আধানম গিব্রাইয়াসুস বলছেন, "বিশ্ববাসীর নজর দেয়ার সময় এসেছে।" কতটা ভয়াবহ এই প্রাদুর্ভাব? এবার ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোতে যে ইবোলা ভাইরাসের যে প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে সেটি ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ। এর শুরু ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে। দেশটির দুটি প্রদেশে প্রথম এটি দেখা দেয়। এ পর্যন্ত আড়াই হাজার ব্যক্তি এতে আক্রান্ত হয়েছেন। যাদের মধ্যে তিনভাগের দ��ইভাগই মারা গেছেন। প্রতিদিন ১২ জন করে নতুন রোগী পাওয়া যাচ্ছে। ইবোলার লক্ষণ কী? ইবোলা একটি ভাইরাস। এতে আক্রান্ত হলে খুব হঠাৎ করে জ্বর দেখা দেয়। খুব দুর্বল লাগে। আরো পুড়ন: 'অন্য বছরের চেয়ে এবারে জটিলতাগুলো অনেক বেশি' ডিআর কঙ্গোর ভয়ংকর বিষধর সাপের মুখোমুখি মাংসপেশি খুব ব্যথা হতে থাকে। গলায়ও খুব ব্যথা হয়। এর পরবর্তী ধাপ হল বমি ও ডাইরিয়া দেখা দেয়। শরীরের ভেতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গে রক্তপাত হতে থাকে। সরাসরি আক্রান্ত ব্যক্তির কেটে যাওয়া ত্বক, তার মুখ, নাক, বমি, রক্ত, মল বা শরীরের অন্য ধরনের তরল কোন পদার্থের সংস্পর্শে এলে নতুন করে কেউ আক্রান্ত হতে পারে। স্বাস্থ্যকর্মীদের অবিশ্বাস করছেন স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অনেকেই। কেন এটি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না? আফ্রিকাতে নানা দেশে চলমান রাজনৈতিক ও সশস্ত্র সংঘাতের কারণে ইবোলার প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করা জটিল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু এ বছরের জানুয়ারি থেকেই ইবোলা চিকিৎসা কেন্দ্র বা স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর ১৯৮টি হামলা হয়েছে যাতে সাতজন নিহত হয়েছে এবং ৫৮ জন আহত হয়েছে। আর একটি সমস্যা হল স্বাস্থ্যকর্মীদের অবিশ্বাস করছেন স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অনেকেই। আর চিকিতসার সময় অসুস্থ ব্যক্তিদের আলাদা করে রাখা হয়, যার ফলে তারা চিকিৎসা কেন্দ্রে যেতে অস্বীকৃতি জানান এবং তাতে সংক্রমিত ব্যক্তির আত্মীয়স্বজনদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। সংক্রমিত হয়েছেন এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়াও একটি বড় সমস্যা। আরো পড়ুন: বাংলাদেশে গত বিশ বছরে এসেছে সাতটি নতুন রোগ সার্ফিং-এর নতুন স্বর্গ হতে পারে যে সমুদ্রতট এমন অনেক রোগীও পাওয়া গেছে যারা কখনো কোন ইবোলা রোগীর সংস্পর্শ আসেননি। চিকিৎসকদের আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা এমএসএফ-এর কর্মকর্তা ট্রিশ নিউপোর্ট বলেছেন, "প্রাদুর্ভাব শুরুর এক বছর ইতিমধ্যেই হয়ে গেছে কিন্তু পরিস্থিতির কোন উন্নত এখনো দেখা যাচ্ছে না।" তিনি আরও বলছেন, "এখানে দীর্ঘ সহিংসতা আর সংঘাতের কারণে জটিল এক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যার কারণে বিদেশী কাউকে অবিশ্বাস করার একটা প্রবণতা রয়েছে।" এটি কি অন্যান্য দেশেও ছড়াতে পারে? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে প্রতিবেশী দেশগুলোতে এটি ছড়িয়ে পরার সম্ভাবনা খুবই বেশি। রোগটির প্রতিষেধক ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে কার্যকর। উগান্ডায় ইতিমধ্যেই রোগটি কয়েকজন��র মধ্যে সনাক্ত হয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে রুয়ান্ডা কারণ দেশটির সাথে ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোর সীমান্তবর্তী অঞ্চল গোমা'তে ইবোলা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তবে এখনই সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। এই রোগের প্রতিষেধক রয়েছে রোগটির প্রতিষেধক রয়েছে এবং সেটি ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে কার্যকর। দেড় লাখের বেশি মানুষকে সেই প্রতিষেধক দেয়াও হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে জনগোষ্ঠীর সকলকে সেটি দেয়া হয়নি। শুধুমাত্র যারা কোন ইবোলা রোগীর সংস্পর্শে এসেছেন অথবা তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদেরকে ওই প্রতিষেধক দেয়া হয়েছে। পশ্চিম আফ্রিকাতে এর আগেরবারের মহামারী যখন চলছিলো তখন এই রোগের প্রতিষেধক প্রস্তুত হয়েছে। এবারের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর সবার জন্য সেটি সহজলভ্য করা হয়েছে। অন্যান্য খবর: 'আয়শার পক্ষে দাঁড়াননি বরগুনার কোন আইনজীবী' 'দুধে সহজে আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারবো না' ভিনগ্রহের প্রাণী দেখতে আমেরিকায় ফেসবুক ইভেন্ট আফ্রিকার ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোতে প্রাণঘাতী অসুখ ইবোলার প্রাদুর্ভাবকে একটি 'বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা' হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। +text: আদিবাসীরা চাইছেন তাদের পৃথক ধর্মীয় পরিচয় - তারা বলছেন তাদের মধ্যে ধর্মাচরণের রীতিতে কিছু কিছু ফারাক থাকলেও মূলত তারা প্রকৃতি পূজারী ওই ধর্মটির নামকরণ করা হয়েছে সার্না। যদিও ভারতের বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠীর মধ্যে ধর্মাচরণের রীতিতে কিছু কিছু ফারাক আছে, তবে মূলত তারা প্রকৃতি পূজারী। আদিবাসী সমাজ বলছে, আগে জনগণনার সময়ে তারা নিজেদের ধর্ম উল্লেখ করার সুযোগ পেতেন, কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে শুধুই হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ ইত্যাদি প্রধান ধর্মগুলির মধ্যেই একটাকে বেছে নিতে বাধ্য হন তারা। এই প্রথা বদলের দাবি ঝাড়খন্ড রাজ্যে দীর্ঘদিন থেকেই উঠেছে। ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের আনা ওই প্রস্তাবটি যদি কেন্দ্রীয় সরকার মেনে নেয়, তাহলে আগামী বছরের জনগণনা ফর্মে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ইত্যাদি প্রধান ধর্মের সঙ্গেই সার্না ধর্মের নামও উল্লেখ করা থাকবে। অন্যদিকে আদিবাসী সমাজ আসলে সনাতন হিন্দু ধর্মেরই অনুসারী বলে মনে করে হিন্দু পুনরুত্থানবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ বা আরএসএস। আদিবাসী সমাজের অনেকেই খ্রিস্টান হয়ে গেছেন বা তারা হয়তো কিছু কিছু হিন্দু রীতি রেওয়াজও পালন করেন, কিন্তু আদিবাসীদের ধর্মগুরু বন্ধন টিগ্গা বলছিলেন যে হাজার হাজার বছর ধরে তারা যে ধর্ম পালন করেন, তা আসলে প্রকৃতির আরাধনা। মি. টিগ্গার কথায়, "ভারতে হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান, জৈন আর বৌদ্ধ - এই ছয়টি ধর্ম দিয়েই জনগণনার সময়ে নাগরিকদের পরিচিতি নথিভুক্ত করা হয়। কিন্তু এর বাইরেও আমরা তপশীলভুক্ত জনজাতি, অর্থাৎ আদিবাসীরাও ভারতের বাসিন্দা। কিন্তু আমাদের কোনও ধর্মীয় পরিচিতি লেখা থাকে না। আমরা প্রকৃতির পূজারী - যে ধর্মের নাম সার্না।" তিনি বলেন, আগামী বছরের জনগণনায় যাতে পৃথক সার্না ধর্ম উল্লেখ করার সুযোগ থাকে, সেটাই চাইছে আদিবাসী সমাজ। ''ভগবান ধর্মেশ, সিংবোঙ্গা, হিল্লা মারাংবুরুর উপাসনা যারা করে, তারাই সার্না ধর্মাবলম্বী। সার্নার আরেক নাম হল সৃষ্টি। জল, বায়ু, অগ্নি, ভূমি এবং আকাশ - এই পাঁচটি মূল উপাদানের মাধ্যমে যে সৃষ্টি, তারই উপাসক আমরা," ব্যাখ্যা করছিলেন বন্ধন টিগ্গা। তিনি আরও জানাচ্ছিলেন যে সার্না শব্দটি ওঁরাও জনজাতির মানুষ ব্যবহার করেন। উপাসনাস্থল বোঝাতে কিন্তু সাঁওতাল, হো, মুন্ডারি ইত্যাদি জনজাতির ভাষায় উপাসনাস্থলের আলাদা নাম আছে বলে তিনি জানান। যে উপাসনাস্থলে প্রকৃতিরূপী ভগবানকে আদিবাসী মানুষ অনুভব করেন, সেটাই সার্না - বলছিলেন মি. টিগ্গা। হিন্দুত্ববাদীরা অবশ্য মনে করেন না যে আদিবাসীদের পৃথক কোনও ধর্ম আছে। তারাও সনাতন হিন্দু ধর্মেরই অংশ বলেই মনে করে আরএসএস। সঙ্ঘের শাখা সংগঠন বনবাসী কল্যাণ আশ্রম দীর্ঘদিন ধরেই আদিবাসী অঞ্চলগুলিতে কাজ করে। এছাড়াও জনজাতি সুরক্ষা মঞ্চও রয়েছে আদিবাসীদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করার জন্য। জনজাতি সুরক্ষা মঞ্চের জাতীয় সহ-কোঅর্ডিনেটর রাজকিশোর হাঁসদার গবেষণার বিষয় ছিল সাঁওতালি এবং হিন্দু সংস্কৃতির তুলনা। বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারেন: আরএসএস-এর জন্য আদিবাসীদের প্রভাবিত করতে কাজ করেন এমন বিশেষজ্ঞরা বলছেন আদিবাসীরাও সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বী তিনি বলেন, সার্না ধর্ম বলে আলাদা কিছু হয় না। এটা আদিবাসীদের একটা অংশের পূজার জায়গা। অনাদিবাসী মানুষরাও, যেমন কুর্মী, কৈরী, এরাও সার্নাস্থলকে মান্য করেন। "আসলে আদিবাসীরাও সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীই। আমার পিএইচডি গবেষণার সময়ে বহু উদাহরণ পেয়���ছি আমি।" তাদের ধর্মাচরণকে কোনওভাবেই হিন্দু ধর্মের থেকে পৃথক করা যায় না বলে মি. হাঁসদা মনে করেন। তিনি বলেন, সাঁওতালি সমাজ নিয়ে গবেষণা করার সময়ে তিনি জানতে পেরেছেন যে তারা প্রায় ৯৫ শতাংশই হিন্দু রীতি নীতি মেনে চলে। "তাদের নামকরণেও রাম, শিব, লক্ষণ, সীতা - এসব নাম পাওয়া যায়। সাঁওতালিদের বিয়ের আসরে লোমতা আর বাওবরে দেখা যায় - এই দুটো হচ্ছে রামায়ণে বর্ণিত ব্রাহ্মণ এবং বিশ্বামিত্র মুনির প্রতীক। মহাভারতে ভীষ্ম যেমন শরশয্যায় শুয়েছিলেন, সে রকমই একটা রীতি আছে শোহরাই পরবে। যারা বলছে যে আদিবাসীরা শুধুই প্রকৃতি পুজারী - সনাতন হিন্দু ধর্মের আধারও তো প্রকৃতিই,'' ব্যাখ্যা করছিলেন রাজকুমার হাঁসদা। তার অভিযোগ, সার্না ধর্মের নামে রাজনীতি তো হচ্ছেই - এছাড়াও এটা একটা বড় আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র, যার মধ্যে খ্রিস্টান মিশনারি এবং বামপন্থীরা জড়িত। আদিবাসী ধর্মগুরু বন্ধন টিগ্গার কাছে যখন আরএসএস এবং তার সহযোগী সংগঠনগুলোর এই ব্যাখ্যার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছিলাম, তিনি প্রথমেই একটা গান গেয়ে এর উত্তর ব্যাখ্যা করতে চাইলেন। "সিন্ধু ঘাটিরে বাবা রে রিয়াএ লা, মহনজুদরো হরপা ঘাটিরে বাবা রে রিয়এ লা... " "এই গানের অর্থ হল কোথা থেকে আর্তচিৎকার আর কান্নার শব্দ আসছে -- সিন্ধু উপত্যকা, মহেনজোদারো, হরপ্পা উপত্যকা থেকে আসছে ওই কান্নার রোল। হাজার হাজার বছর ধরে আদিবাসী সমাজ সিন্ধু উপত্যকার কান্না নিয়ে প্রচলিত গানটি গেয়ে থাকে। অনার্য সিন্ধু সভ্যতার ওপরে আর্যদের আক্রমণ এবং যুদ্ধের কথাই বলা হয়েছে ওই গানে," বললেন মি. টিগ্গা। তাই মি. টিগ্গার প্রশ্ন, "আদিবাসীরা যদি সনাতনী হিন্দুই হবে, তাহলে কেন মধ্য এশিয়া থেকে আগত আর্যদের সঙ্গে অনার্যদের যুদ্ধ হয়েছিল সিন্ধু উপত্যকায়? এছাড়াও জন্ম-বিবাহ-মৃত্যু জীবনের প্রতিটা মুহূর্তেই হিন্দুদের সঙ্গে আদিবাসীদের অমিল রয়েছে। যেমন হিন্দুদের মৃত্যু হলে দাহ করা হয়, কিন্তু আদিবাসীদের দাফন করা হয়। ''তবে কেউ যদি মৃত্যুর পরে দাহ করার ইচ্ছা প্রকাশ করে থাকেন, তাকে অবশ্য দাহই করা হয়। জীবনের কোনও ক্ষেত্রেই আমাদের ধর্মাচরণের সঙ্গে হিন্দু ধর্মের মিল নেই।" আদিবাসীরা বলছেন তাদের জীবন ও ধর্মাচরণের সাথে হিন্দুদের ধর্মাচরণের অনেক তফাৎ রয়েছে আদিবাসীদের পৃথক ধর্ম বলে কিছু হয় না বলে যখন মনে করছে আরএসএস এবং তার শাখা সংগঠনগুলি, তখন ঝ���ড়খন্ডের সাহিত্যকার ভন্দনা টেটে বলছিলেন যে আদিবাসীরা চিরকালই প্রকৃতির আরাধনা করে এসেছে। তবে আরএসএস-ই আদিবাসী সমাজের মধ্যে ধীরে ধীরে হিন্দু ধর্মের রীতি-নীতি, আচার-আচরণের প্রবেশ করিয়েছে। "দীর্ঘদিন ধরে আদিবাসী সমাজের মধ্যে প্রভাব বিস্তারের কাজ করছে আরএসএস। হিন্দু ধর্মের প্রেক্ষিতে ভাল-মন্দের ভাবনাটা আদিবাসীদের মাথায় (তারাই) ঢুকিয়েছে," বলছিলেন মিসেস টেটে। "যেমন আমরা গরুর মাংস খাই। কিন্তু হিন্দুত্ববাদীরাই এটা বোঝাতে থাকে যে গরুকে তো মা হিসাবে মানা হয়, তাহলে কী করে গরুর মাংস খাওয়া যেতে পারে? এছাড়াও অনেক জায়গাতেই দারোম, অর্থাৎ রীতি রেওয়াজ অনুযায়ী গরু, মহিষ শূকর, মুরগী এসব উৎসর্গ করা হয়। আরএসএস-ই আদিবাসীদের একটা অংশকে ব্রেনওয়াশ করে বোঝায় যে এটা অনুচিত। "এক দিকে হিন্দুরা বলে আমরাও নাকি তাদের ধর্মেরই, অথচ এখনও আদিবাসীদের অসুর-রাক্ষস-বর্বর ইত্যাদি বলা হয়ে থাকে। আদিবাসীদের হীন দেখানো হয় হিন্দু ধর্মে," বলছিলেন ভন্দনা টেটে। প্রস্তাব পাশ হয়ে গেলেও আদিবাসীদের এই ধর্মের যে নাম দেওয়া হয়েছে - সার্না - তা নিয়ে আদিবাসী সমাজের মধ্যেই মতান্তর রয়েছে বলে জানাচ্ছিলেন সমাজকর্মী অলোকা কুজুর। "সার্না শব্দের অর্থ হল শাল গাছ। এটা ওঁরাও জনজাতির ভাষা কুরুক শব্দ। সব আদিবাসী কিন্তু সার্না শব্দটাকে মেনে নেয় না। ঝাড়খন্ডেই সার্না নিয়ে তিনটে ভাগ রয়েছে আদিবাসীদের মধ্যে। যদি এটাকে আদিবাসী ধর্ম বলে অভিহিত করা হত, তাহলে হয়তো যথার্থ হত। ''কিন্তু শুধু ওঁরাও জনজাতির উপাসনাস্থলকে সব আদিবাসীর ধর্ম বলাটা ঠিক হয়নি। প্রত্যেকটা জনজাতির পৃথক নামে উপাসনাস্থল রয়েছে। তারা কি সার্না ধর্ম মেনে নেবে?" প্রশ্ন অলোকা কুজুরের। ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের আদিবাসী সমাজের জন্য একটি পৃথক ধর্মের স্বীকৃতি চেয়ে বিধানসভায় সম্প্রতি একটি প্রস্তাব পাশ করা হয়েছে। +text: রাশিয়াতে একটি বাস জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। সারা বিশ্বেই এখন দেখা যাচ্ছে যে লোকজন তাদের কনুই দিয়ে দরজা খোলার চেষ্টা করছেন, সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠা বা নামার সময় রেলিং ধরছেন না এবং বাসে ট্রেনে চলার সময় হ্যান্ডল না ধরেই তারা দাঁড়িয়ে আছেন, অফিসে পৌঁছেই লোকজন জীবাণুনাশক দিয়ে তাদের ডেস্ক ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করছেন। যেসব এলাকায় এই ভাইরাসের মারাত্মক সংক্রমণ ঘটেছে সেখানে পরিবহন, রাস্তা ঘাট ও পার্কে স্প্রে করে সেগুলো জীবাণুমুক্ত করার চেষ্টা চলছে। একই উপায়ে পরিষ্কার করা হচ্ছে অফিস আদালত, হাসপাতাল, দোকানপাট, রেস্তোরাঁও। ড্রপলেটে কী থাকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির সময় তার নাক ও মুখ দিয়ে যে জলীয় কণা বা ড্রপলেট বাতাসে বের হয়ে আসে তার মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাত্র এক বারের কাশি থেকেই বের হতে পারে এরকম ৩,০০০ ড্রপলেট। ড্রপলেটের এই কণা গিয়ে পড়তে পারে আরেকজনের গায়ে, কাপড়ে এবং আশেপাশের জিনিসের উপর। তবে কিছু ক্ষুদ্র কণা থেকে যেতে পারে বাতাসেও। দেখা গেছে এই ভাইরাস মল-মূত্রের মধ্যে আরো বেশি সময় বেঁচে থাকতে পারে। টয়লেট থেকে ফিরে ভাল করে হাত না ধুলে তার হাতের স্পর্শের সাহায্যে আরো অনেক কিছুতেই এই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন বলছে, ভাইরাসটি লেগে আছে এরকম কোন বস্তু স্পর্শ করার পর হাত দিয়ে যদি মুখ স্পর্শ করা হয় তাহলে ভাইরাসটি ছড়াতে পারে। তবে এটিই এই ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার প্রধান উপায় নয়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে অবরুদ্ধ ইতালি: রাস্তাঘাট ফাঁকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অন্যান্য কর্তৃপক্ষও বলছে যে, বার বার হাত ধুয়ে এবং একই সাথে যেসব জিনিস ধরা হচ্ছে সেগুলো বার বার জীবাণুমুক্ত করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব। করোনাভাইরাসের আয়ু এটা এখনও পরিষ্কার নয় যে কোভিড-১৯ এর জীবাণু মানবদেহের বাইরে কতক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে আরো যেসব করোনাভাইরাস আছে, যেমন সার্স ও মার্স, সেগুলো লোহা, কাঁচ এবং প্লাস্টিকের গায়ে ৯ (নয়) দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। আবার কোনো কোনো ভাইরাস ঠাণ্ডা জায়গায় ২৮ দিনও বেঁচে থাকতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেলথের একজন ভাইরোলজিস্ট নিলৎজে ফান ডোরমালেন তার সহকর্মীদের নিয়ে গবেষণা চালিয়ে দেখেছেন কোভ-২ বা সার্স ভাইরাস কতক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে। তাতে দেখা গেছে, কাশি দেওয়ার পর থেকে ড্রপলেটের মধ্যে এই ভাইরাসটি তিন ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। ক্ষুদ্র ড্রপলেটে, যার আকার ১ থেকে ৫ মাইক্রোমিটার (মানুষের চুলের ৩০ গুন চিকন) সার্স ভাইরাস কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকে। করোনাভাইরাস: 'লকডাউন' করা হলো মা��ারীপুরের শিবচর উপজেলা করোনাভাইরাস: বাংলাদেশে মসজিদে নামাজ নিয়ে কী হবে? করোনাভাইরাস: শিশুদের কি বন্ধুদের সাথে খেলতে দেওয়া উচিৎ? করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে গোমূত্র খেয়ে হাসপাতালে ইতালিতে একদিনে রেকর্ড ৪৭৫ জনের মৃত্যু ড্রপলেট ছড়ানো বন্ধ করতে গাড়িতে প্লাস্টিক দিয়ে চালক ও যাত্রীকে আলাদা করা হচ্ছে। তবে গবেষণায় দেখা গেছে কোভ-২ ভাইরাস কার্ডবোর্ডের মতো শক্ত জিনিসের ওপর ২৪ ঘণ্টা আর প্লাস্টিকের জিনিসের গায়ে দুই থেকে তিন দিনও বেঁচে থাকতে পারে। গবেষণা বলছে, ভাইরাসটি দরজার হাতল, প্লাস্টিক ও লেমিনেটেড ওয়ার্কটপ ও কঠিন বস্তুর ওপর দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকতে পারে। আর কপারের কোন জিনিসে পড়লে এর মৃত্যু হতে চার ঘণ্টা সময় লেগে যেতে পারে। নির্মূলের উপায় গবেষণায় দেখা গেছে করোনাভাইরাসকে এক মিনিটেই নিষ্ক্রিয় করে ফেলা যেতে পারে। ৬২-৭১% এলকোহল মিশ্রিত তরল পদার্থ দিয়ে কোনো জিনিসকে করোনামুক্ত করা যায়। ০.৫ শতাংশ হাইড্রোজেন প্রিঅক্সাইড এবং ০.১% সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট মেশানো ব্লিচ দিয়েও করোনাভাইরাস নির্মূল করা সম্ভব। উচ্চ তাপমাত্রা ও আদ্রতার কারণেও অন্যান্য করোনাভাইরাসের দ্রুত মৃত্যু হতে পারে। দেখা গেছে সার্সের জন্যে দায়ী করোনাভাইরাস ৫৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায় বেঁচে থাকতে পারে না। কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু বিজ্ঞানীরা বলছেন, কোভিড-১৯ এর জন্যে দায়ী ভাইরাসটি কতক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে তা নির্ভর করে এটি কোন ধরনের বস্তুর গায়ে পড়েছে তার ওপর। দরজার শক্ত হাতল, লিফটের বাটন এবং কিচেন ওয়ার্কটপের মতো শক্ত জিনিসের গায়ে প্রায় ৪৮ ঘণ্টা টিকে থাকতে পারে। তবে এর আগের গবেষণায় দেখা গেছে সহায়ক পরিবেশে সব ধরনের করোনাভাইরাস এক সপ্তাহও বেঁচে থাকতে পারে। মার্সের জন্য দায়ী এই করোনাভাইরাস। তবে কাপড়ের মতো নরম জিনিসের গায়ে এটি এতো লম্বা সময় বেঁচে থাকতে পারে না। ফলে আপনি যে কাপড়টি পরেছেন এবং তাতে যদি ওই ভাইরাসটি থাকে, জামাটি একদিন কিম্বা দুদিন না পরলে সেখানে ভাইরাসটি জীবিত থাকার আর সম্ভাবনা নেই। মনে রাখতে হবে, কোভিড-১৯ এর ভাইরাসটি লেগে আছে এরকম জিনিসে শুধু স্পর্শ করলেই আপনি আক্রান্ত হবেন না। শুধু স্পর্শ করার পর আপনি যদি হাত দিয়ে মুখ, নাক অথবা চোখ স্পর্শ করেন তাহলেই এই ভাইরাসটি আপনার শরীরে ঢুকে পড়বে। তাই এই ভাই��াসটি প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ একটি করণীয় হচ্ছে হাত দিয়ে মুখ স্পর্শ না করা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে লোকজনের মধ্যে বিভিন্ন বস্তু ধরার বিষয়ে তাদের মধ্যে এক ধরনের ভীতির সঞ্চার হচ্ছে। +text: শহর ছেয়ে গেছে এমন বিলবোর্ডে। এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ তার মাথায় খেলে গেল এক 'ক্রিয়েটিভ আইডিয়া'। বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে সেই আইডিয়ার বাস্তবায়নে সে কাজেও নেমে পড়লো। আর শুক্রবার সকালে তার ফলাফল দেখতে পেলেন মহারাষ্ট্রের পুনে লাগোয়া এলাকা পিম্পরির বাসিন্দারা। সমস্ত রাস্তা ছেয়ে গেছে ছোট বড় হোর্ডিংয়ে বা সাইনবোর্ডে - ফ্লেক্সে ছাপানো, কাঠের ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাস্তার ল্যাম্পপোস্ট, রোড ডিভাইডারের ওপরে লাগানো। সেগুলোতে ইংরেজিতে লেখা "শিভঢ়ে, আই অ্যাম সরি", সঙ্গে একটি লাল রঙের হার্ট - প্রেমের চিহ্ন। প্রথমে কেউ কেউ ভেবেছিলেন কোনও নতুন ছবির বিজ্ঞাপন বুঝি! তারপরে খবর পেল পুলিশ। কে লাগালো এত হোর্ডিং! কর্পোরেশনের অনুমোদন ছাড়া হোর্ডিং লাগানো তো বেআইনি! খুঁজে পাওয়া গেল যে ছাপাখানায় এগুলো ছাপা হয়েছে, তার। সেখান থেকে জানা গেল ছাপার অর্ডার দিয়েছিল কে! আর শেষমেশ খুঁজে পাওয়া গেল ২৫ বছর বয়সী নীলেশ খেড়েকারকে। যার মাথায় এসেছিল বান্ধবীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার এই 'চমকপ্রদ' পদ্ধতি। । বেশ কয়েকবারের চেষ্টায় ফোনে ধরা গেল ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান মি. খেড়েকারকে। আইডিয়ার বাস্তবায়নে পকেট থেকে বেরিয়ে গেছে কড়কড়ে ৭২ হাজার টাকা। জানতে চাইলাম, "আপনিই লাগিয়েছিলেন ওই হোর্ডিংগুলো?" কয়েক সেকেন্ড চুপ। তারপরে বললেন, "এই বিষয়টা খুব ব্যক্তিগত। প্লিজ আমার কাছে কিছু জানতে চাইবেন না।" কিন্তু ওয়াকাড থানার অফিসার সতীশ মাণে বিবিসি বাংলাকে শোনালেন ঘটনাটা। "নীলেশের বন্ধুর কাছ থেকেই আমরা জানতে পারি প্রথমে যে বিষয়টা কী। তারপরে ওকে ডেকে পাঠিয়েছিলাম আমরা। নীলেশের সঙ্গে তার বান্ধবীর ঝগড়া হয়েছিল। তারপরেই মেয়েটি মুম্বাইতে চলে যায়। শুক্রবার সে শহরে ফিরবে, এটা জানতে পেরে বান্ধবীর কাছে সরি বলার জন্য একটা অভিনব উপায় খুঁজছিল নীলেশ। তখনই তার মাথায় আসে যে শহর জুড়ে হোর্ডিং লাগিয়ে চমকে দেবে বান্ধবীকে," হাসতে হাসতে বলছিলেন মি. মাণে। বান্ধবীর নাম স্বাভাবিক কারণেই প্রকাশ করে তাকে বিব্রত করতে চাইছে না পুলিশ। তবে তারা এটুকু বলছে, নীলেশ তার বান্ধবীকে শিভঢ়ে নামে ডাকত। সেটাই তার পদবী কি না, জানা যায় নি। তবে বান্ধবীকে চমকে দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার এই অভিনব উপায় যে তাকে এরকম বিব্রতকর অবস্থায় ফেলবে, সেটা বোধহয় বুঝতে পারেন নি নীলেশ। আর চমক দিতে গিয়ে তার পকেট থেকে খরচও কম হয় নি। ফ্লেক্স হোর্ডিং ছাপানোর পরে বেশ কিছু যুবককে দিয়ে সেগুলো রাত জেগে রাস্তায় লাগাতে হয়েছে। পকেট থেকে বেরিয়ে গেছে কড়কড়ে ৭২ হাজার টাকা। এত কিছুর পরে নীলেশের সেই বান্ধবী কী ক্ষমা করল তাকে? জানা যাচ্ছে না সেটা। যে বান্ধবীকে ঘিরে এত কাণ্ড, সে কী আদৌ দেখতে পেয়েছে হোর্ডিংগুলো? কারণ পুলিশে কাছে ধমক খেয়ে হোর্ডিংগুলো রাতারাতি সরিয়ে নিয়েছে নীলেশ আর তার বন্ধুরা। কথা ছিল সে আসবে শুক্রবার। তার আগেই এক দফা ঝগড়া হয়ে গেছে দুজনের। তাই মান ভাঙ্গাতে হবে বান্ধবীর। কিন্তু কী করা যায়? +text: একজন উচ্চপদস্থ উত্তর কোরিয়ান কর্মকর্তা চীন সফর করছেন।ধারণা করা হচ্ছে তিনি কিম জং-আন। জাপানের গণমাধ্যম থেকে প্রথম জানানো হয় একটি উত্তর কোরিয়ান কূটনীতিক ট্রেনে উচ্চপদস্থ কোনো কর্মকর্তা বেইজিংয়ে পৌঁছেছে এবং যে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে তাঁকে অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছে তারা কর্মকর্তার পরিচয় জানে না, তবে তারা বিষয়টি নজরদারিতে রেখেছে। আরো পড়ুন: কিভাবে সম্ভব হলো কিম-ট্রাম্প বৈঠকের উদ্যোগ ? রকেট ম্যান, উন্মাদ: ট্রাম্প-কিমের বিদ্রুপ যুদ্ধ কিমের আমন্ত্রণে ট্রাম্পের সাড়া দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি মি. কিমের প্রথম আন্তর্জাতিক সফর হতে পারে। চীন বা উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়া হয়নি। তবে এরকম একটি সফরকে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখা হবে। গতমাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্র্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মি. কিমের সাথে দেখা করার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন। ধারণা করা হচ্ছে এই সাক্ষাৎকে সফল করার উদ্দেশ্যে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছেন উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তারা। বিশ্লেষকরা বলছেন উত্তর কোরিয়া ও চীনের নেতারা এই সাক্ষাতের আগে দেখা করতে পারেন। উত্তর কোরিয়ার বৃহত্তম বাণিজ্যিক সহযোগী চীন। টোকিও ভিত্তিক নিপ্পন নিউজ নেটওয়ার্ক সবুজ রংয়ের এই ট্রেনটির ভিডিওচিত্র প্রকাশ করে। সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে বলা হয় ট্রেনটি মি. কিমের বাবার ব্যবহার করা ট্রেনের মত দেখতে। ২০১১ তে কিম জং-আনের বাবা কিম জং-ইল যখন বেইজিং সফর করেন তখন এই ট্রেনটি ব্যবহার করেছিলেন তিনি। কিম জং-ইল চীন সফর শেষে ফিরে যাওয়ার পর তাঁর সফরের খবর প্রকাশিত হয়। উত্তর কোরিয়ার একজন নেতা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বেইজিংয়ের একটি এলাকায় রাস্তা বন্ধ করে রাখে পুলিশ বেইজিং রেলওয়ে স্টেশনের বাইরে একটি দোকানের ম্যানেজার সোমবার দুপুরে "অস্বাভাবিক" দৃশ্য দেখেছেন বলে জানান তিনি । "স্টেশনের বাইরে ও ভেতরে অনেক পুলিশ ছিল। স্টেশন ভেতর থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল", এএফপি নিউজ এজেন্সিকে জানান তিনি। রয়টার্সের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বেইজিংয়ের তিয়ানানমান স্কোয়ার থেকে পুলিশ পর্যটকদের সরিয়ে দিচ্ছিলো যা সেখানকার 'গ্রেট হল অব পিপল' এ উচ্চ পর্যায়ের কোনো বৈঠক হলে করা হয়। বার্তাসংস্থাটি জানিয়েছে পুলিশ প্রহরায় একটি গাড়িবহর ঐ স্থান থেকে চলে যেতে দেখা গেছে। উত্তর কোরিয়া ও চীনের মধ্যে প্রধান রেলওয়ে যোগাযোগের পথ রয়েছে চীনের সীমান্তবর্তী শহর ড্যানডংয়ে। সেখানেও অস্বাভাবিক দৃশ্য দেখা গেছে বলে বলা হচ্ছে। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়োনহাপ নিউজের সাথে কথা বলার সময় বিশ্লেষকরা বলেছেন এই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মি. কিমের ছোট বোন কিম ইয়ো-জং, যিনি সম্প্রতি শীতকালীন অলিম্পিকে দক্ষিণ কোরিয়া সফল করেছেন, তিনিও হতে পারেন। সেনাবাহিনী কর্মকর্তা চোয়ে রিয়ং-হায়ে'র নামও আসছে সাম্ভাব্য তালিকায়। সোলের রাষ্ট্রপতির অফিস থেকে একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন "আমরা এখনো নিশ্চিত হইনি বেইজিং সফরে কে গিয়েছেন। আমরা অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি।" উত্তর কোরিয়ার বৈঠকসমূহ এর আগে মার্চে, উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্টেফান লফভেনের সাথে দেখা করেন। আগামী মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার নেতাদের মধ্যে প্রথমবারের মত ঐতিহাসিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আগামী মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইনের সাথে সাক্সাৎ করার কথা রয়েছে কিম জং-আনের। আরো পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত কম ছবি কেন বাংলাদেশে? গায়ের রংয়ের ওপর নাগরিকত্ব দেয়া হয় যে দেশে দেশে দেশে রুশ কূটনীতিক বহিষ্কার ট্রাম্প ও কিম: শত্রু থেকে বন্ধু? একজন উচ্চপদস্থ উত্তর কোরিয়ান কর্মকর্তা চীন সফর করছেন বলে সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে তিনি আসলে কিম জং-আন। +text: স্টিভ রোডস বাংলাদে��ের ক্রিকেট বোর্ডের মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বিবিসি বাংলাকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কোচের সাথে কথা বলে ''সমঝোতার'' ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলতি বিশ্বকাপে দলের পারফরমেন্স নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হওয়ার প্রেক্ষাপটে কোচ স্টিভ রোডসের চুক্তি বাতিল করা হলো। বিশ্বস্ত একটি সূত্রে জানা গেছে, লন্ডনে বিসিবির উপস্থিত সদস্যরা এক বৈঠকে বিশ্বকাপে দলের পারফরমেন্স পর্যালোচনা করেন। ঐ বৈঠকে কোচ স্টিভ রোডসের ''গেম প্ল্যান'' এবং ম্যাচ চলাকালীন খেলোয়াড়দের সাথে ''কমিউনিকেশন'' নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। ঐ সূত্র জানায়, "সিদ্ধান্ত লন্ডনেই হয়েছে।" সোমবার ঢাকায় বিসিবির প্রধান নির্বাহী বৈঠক করে মি রোডস এবং কোর্টনি ওয়ালশকে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন। বোলার সাইফউদ্দিনের সাথে অনুশীলনে স্টিভ রোডস আরও পড়ুন: 'ইংলিশ হলেও বাংলাদেশের হয়ে তাঁদের হারাতে চাই' ব্রিটিশ কন্ডিশনে দ্রুত মানিয়ে নেয়াটাই চ্যালেঞ্জ: ওয়ালশ আগামি বছর অনুষ্ঠেয় টি-২০ বিশ্বকাপ পর্যন্ত স্টিভ রোডসের সাথে বিসিবির চুক্তি ছিল। অবশ্য কোর্টনি ওয়ালশের সাথে চুক্তি ছিল চলতি বিশ্বকাপ পর্যন্ত। বিশ্বকাপে আটটি ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশ তিনটি ম্যাচে জিতেছে। হেরেছে বাকি পাঁচটিতে। পয়েন্ট তালিকায় ১০ টি দলের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান আট নম্বরে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং আফগানিস্তানের আগে। ২০১৮ সালের জুন মাসে দু বছরের চুক্তিতে স্টিভ রোডস বাংলাদেশ ক্রিকেটে দলের হেড কোচ হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু এক বছরের মধ্যে তাকে বিদায় নিতে হলো। চলতি বিশ্বকাপে তাদের খেলা শেষ করে দল ঢাকায় ফেরার একদিন পরই স্টিভ রোডসকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশের সাথে চুক্তি নবায়ন না করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। +text: আগামী সপ্তাহে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে নানা ঘটনা এখানে তেমন কয়েকটি বিষয়ের উল্লেখ করা হলো যেগুলো হয়তো আগামী সপ্তাহে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি কাড়বে। ১. ব্রাজিলের নির্বাচন বিশ্বের পঞ্চম জনবহুল দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী রোববার। কিন্তু কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ? এর কারণ হলো প্রেসিডেন্ট পদটির জন্য লড়াই হচ্ছে তুমুল। এর মধ্যে একজন প্রার্থী ইতোমধ্যে হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে গিয়েছেন। এই প্রার্থী সাবেক সে��া কর্মকর্তা জেইর বলসোনারো লড়ছেন ডানপন্থী সোশ্যাল লিবারেল পার্টির হয়ে। সমকাম ও নারী ইস্যুতে তার বক্তব্যের জন্য ইতোমধ্যেই তিনি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন। তিনি বলেছিলেন সমকামী হলে তার সন্তানকে তিনি ভালোবাসবেননা। যদিও অপরাধ বিষয়ে তার অবস্থান অনেকের সমর্থন কুড়িয়েছে। আর জনমত জরিপগুলোতেও তার এগিয়ে থাকার তথ্য মিলছে। তার বিরুদ্ধে রয়েছে বামপন্থী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী সাওপাওলো শহরের সাবেক মেয়র ফার্নান্দো হাদ্দাদ। মেলনিয়া ট্রাম্প ২. একাকী ভ্রমণ যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প আফ্রিকা ভ্রমণে যাচ্ছেন এবং এ সফরে তিনি ঘানা, মালাওয়ি, কেনিয়া ও মিসরে যাবেন। এ সফরটি গুরুত্ব পাচ্ছে কারণ এটিই তার বড় ধরণের প্রথম বিদেশ ভ্রমণ ফার্স্ট লেডি হওয়ার পর। এর আগে একটি সংক্ষিপ্ত সফরে তিনি ক্যানাডা গিয়েছিলেন। সে কারণেই সবার দৃষ্টিতে থাকবে এবারের সফর যাতে সবাই তাকে পর্যবেক্ষণ করবেন যে কিভাবে তিনি আমেরিকাকে উপস্থাপন করেন। আরেকটি বিষয় হলো তার স্বামী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো আফ্রিকা সফরে যাননি। ৩. আতঙ্কিত হবেননা বুধবার প্রতিটি আমেরিকান তাদের মোবাইলে প্রেসিডেন্টের তরফ থেকে একটি জরুরি বার্তা পাবেন। তবে এটি আসলে একটি পরীক্ষা নিরীক্ষা যদিও এটিকে গুরুত্বপূর্ণ বলা হচ্ছে। এটা করা হচ্ছে এজন্য যে বড় দুর্যোগ বা জরুরি অবস্থায় সারাদেশে একযোগে বার্তা পাঠিয়ে সবাইকে সতর্ক করা যায় কি-না সেটি দেখার জন্য। যদিও অনেকে ইতোমধ্যেই বিরক্ত হয়ে ওই সময় মোবাইল ফোন বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন। দু কোরীয়ার দু নেতা ৪. কিম জং আন- নোবেল পাচ্ছেন? শুক্রবারই জানা যাবে এবারের নোবেল শান্তি পুরস্কার পাচ্ছেন কে? এ পুরস্কারটি প্রতিবারই সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থীর জন্য জোটেনা। গত বছরেই পুরস্কারটি পেয়েছে একটি প্রতিষ্ঠান- যারা পারমানবিক অস্ত্র বিরোধী প্রচারণায় লিপ্ত রয়েছে। অনেকেই মনে করছেন এবার উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং আন ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে ইন শান্তি পুরস্কার জিতে নিতে পারেন। আর এটি আসতে পারে কোরীয় উপত্যকায় উত্তেজনা কমাতে তাদের সাম্প্রতিক উদ্যোগের কারণে। প্রেসিডেন্ট মুন অবশ্য মনে করেন অন্য কারই এ পুরস্কার জেতা উচিত। জোডি হোয়াইটেকার অভিনয় করেছেন ডাক্তার হিসেবে ৫. চিকিৎসকের সাথে অ্যাপয়ে���্টমেন্ট অভিনেত্রী জোডি হোয়াইটেকারই প্রথম এবং তিনি নিজেকে রোববার অভিষিক্ত করতে যাচ্ছেন টাইম লর্ড (নাকি টাইম লেডি?) হিসেবে। দ্যা ওমেন হু ফেল টু আর্থ মুভিতে তিনি অভিনয় করবেন চিকিৎসক হিসেবে। গত জুলাইতে তিনি এ চরিত্রটি নিশ্চিত করেছিলেন এবং এরপর থেকেই এ নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়া এসেছে তার ভক্তদের কাছ থেকে। এখন অবশ্য শুধু উপভোগের বিষয় হবে এটি যে তিনি কিভাবে টাইম ও স্পেসের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করেন। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন : ‘একটা বই নিয়ে এত ভয় কেন?' বিচারপতি সিনহা জীবনে যা হতে চেয়েছিলেন সেটা কি পূরণ হয়েছে? মিশরের স্কুল থেকে মিকি মাউস কেন বাদ দেয়া হচ্ছে আজ সোমবার। পশ্চিমা বিশ্বের নতুন সপ্তাহের শুরুর দিন। আগামী সাত দিনে বিশ্বে কিসব ঘটনা ঘটে যাবে সে সম্পর্কে আগাম ধারণা করা কঠিন। যদিও কিছুটা অনুমান করা যায়। +text: গ্রেপ্তারের সঙ্গে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সম্পৃক্ত রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদের মধ্যে বাদশাহের ভাইও রয়েছেন। এই তিনজনের মধ্যে অন্তত দুইজন দেশটির সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অন্যতম। কিন্তু কেন তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা জানানো হয়নি। তবে এই গ্রেপ্তারের সঙ্গে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সম্পৃক্ত রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৭ সালে সৌদি রাজপরিবারের অনেক সদস্য, মন্ত্রী এবং ব্যবসায়ীকে রিয়াদের দেশটির রিৎস-কার্লটন হোটেলে আটকে রাখা হয়, কারণ সৌদি যুবরাজ তাদের গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ২০১৬ সালে যুবরাজ ঘোষণার পর থেকে এই রাজতন্ত্রের দেশটিতে মোহাম্মদ বিন সালমানকে অঘোষিত শাসক বলে মনে করা হয়। নিউইয়র্ক টাইমস এবং ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল খবর দিয়েছে, শুক্রবার সকালের দিকে এসব গ্রেপ্তার চালানো হয়। যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন বাদশাহের ছোট ভাই প্রিন্স আহমেদ বিন আবদুলআজিজ, সাবেক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফ এবং রাজকীয় কাজিন প্রিন্স নাওয়াফ বিন নায়েফ। মোহাম্মদ বিন নায়েফ সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। তবে ২০১৭ সালে মোহাম্মদ বিল সালমানের নির্দেশে তাকে সেই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয় এবং গৃহবন্দী করা হয়। আরো পড়ুন: সৌদি আরবে কে এই প্রবল ক্ষমতাধর যুবরাজ মোহাম্মদ দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের পর সৌদি আরবে তোলপাড় সৌদি প্রিন্সদের কয়েদখানা রিৎস হোটেল খুলেছে কাবা অবরোধ: সৌদির ইতিহাস পাল্টে দেয়া ঘটনা যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং মোহাম্মদ বিন নায়েফ ওয়াল স্ট্রির্ট জার্নাল জানিয়েছে, নিরাপত্তা রক্ষীরা মুখোশ ও কালো পোশাক পড়ে রাজপরিবারের এই সদস্যদের বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি চালায়। ২০১৬ সালে যখন চরম রক্ষণশীল সৌদি আরবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছিলেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান, তখন সেটি বিশ্বব্যাপী প্রশংসা পেয়েছিল। কিন্তু ২০১৮ সাল নাগাদ ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাসোগজি হত্যাকাণ্ডের ঘটনাসহ আরো বেশ কিছু কেলেঙ্কারির ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িয়ে পড়েন। সম্প্রতি করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে সৌদি আরব। দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জন্য ওমরাহ হজ্জ পালন বন্ধ করে দিয়েছে সৌদি আরব। গভীরভাবে পরিষ্কার করার জন্য গত বৃহস্পতিবার ইসলামের পবিত্রতম শহর মক্কা খালি করে ফেলা হয়েছিল। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: 'দুবাইয়ের শেখ মোহাম্মদ অপহরণ এবং হুমকির জন্য দায়ী' বিবিসি বাংলার জরিপে শ্রেষ্ঠ বাঙালি: ১১- তিতুমীর ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলার সরকারি প্রস্তুতি কি যথেষ্ট? করোনাভাইরাস: ইরান ও ইরাকে জুম্মার নামাজ বাতিল সৌদি আরবের রাজপরিবারের তিনজন জ্যেষ্ঠ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলো খবর দিয়েছে। +text: অনেকে এখনো তাদের নিখোঁজ স্বজনের কোন খবর পাননি। কিন্তু নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশী কতজন সে নিয়ে রয়েছে সংশয়। এছাড়া যারা আহত অবস্থায় হাসপাতালে রয়েছেন, তাদের নিয়েও রয়েছে উদ্বেগ আর উৎকন্ঠা। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে শুক্রবারের হামলায় আহত হয়ে যেসব বাংলাদেশী হাসপাতালে রয়েছেন, তাদের খোঁজখবর রাখতে এবং প্রয়োজনে রক্ত দেয়া ও অন্যান্য সহযোগিতার জন্য স্থানীয় বাংলাদেশীরা পালাক্রমে হাসপাতালে থাকছেন বলে জানিয়েছেন তাদের বন্ধু ও সহকর্মীরা। হামলার দিন মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন জাকারিয়া ভুঁইয়া। হামলায় জাকারিয়া ভুঁইয়া মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন তাদের বন্ধু মোহাম্মদ বাবুল ইসলাম। "আজ সকালে সব মৃতদেহ মসজিদ থেকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। ভেতরে ৪১ জন নিখোঁজ ছিলেন, সবাই মারা গেছেন। জাকারিয়া ভাই ভেতরে ছিলেন। তবে কর্তৃপক্ষ আমাদের কারো লাশ দেখতে দেয় নাই এখনো।" মিঃ ইসলাম জানিয���েছেন, এই মূহুর্তে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন অন্তত পাঁচজন বাংলাদেশী। এদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশংকাজনক। এদিকে নিউজিল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ এখনো কারো লাশ শনাক্ত করা কিংবা নিহতদের নাম প্রকাশ করার কাজটি করেনি। তবে দ্রুতই সেটি করা হবে বলে কর্তৃপক্ষ হাসপাতালে অপেক্ষমান স্বজনদের জানিয়েছে বলে মিঃ ইসলাম জানিয়েছেন। আরো পড়ুন: ক্রাইস্টচার্চ হামলার ভিডিও তুলে নেয়া যাচ্ছে না কেন ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলা, বাংলাদেশী সহ নিহত ৪৯ 'চাবি, জুতা ফেলেই জান বাঁচাতে দৌড় দেই" 'নিহত বাংলাদেশী আবদুস সামাদের স্ত্রী জীবিত আছেন' নিখোঁজ স্বজনের জন্য অনেকের প্রতীক্ষার অবসান হয়নি এখনো। এর আগে ঐ হামলায় বাংলাদেশের তিনজন নিহত হয়েছেন বলে শুক্রবার জানিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা। এর মধ্যে নিউজিল্যান্ডের লিঙ্কন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ড. আবদুস সামাদ ও তার স্ত্রী এবং আরেকজন নারী রয়েছেন বলে জানানো হয়। কিন্তু পরে বিবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে দূতাবাসের অনারারী কনসাল শফিকুর রহমার ভুঁইয়া জানিয়েছেন, ড. আবদুস সামাদের স্ত্রী বেঁচে আছেন বলে দূতাবাসকে জানিয়েছেন তাদের ছেলে। ড. আবদুস সামাদের ছেলে তারেক মোহাম্মদ জানিয়েছেন, তার বাবা মারা গেছেন কিনা সেটি এখনো নিশ্চিত নন তারা। "আমি নিশ্চিত না আমার বাবা মারা গেছেন কিনা, এজন্য আমরা হাসপাতালের লিস্টের জন্য অপেক্ষা করছি। সেই লিস্টে যদি তার নাম না থাকে তাহলে বুঝতে হবে তিনি ক্রিটিক্যালি ইনজ্যুরড হয়েছেন।" "কারণ তিনি যেরকম মানুষ, দুইদিন হয়ে গেছে, কোন ফোন দেন নাই তিনি। ন্যুনতম সেন্স থাকলেও তিনি আমাদের জানাতেন। এখন আমরা জানতে চাই, তিনি বেঁচে আছেন কিনা।" দেশে ফিরে আসছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। বিমানে আরোহনের আগে ক্রাইস্টচার্চ বিমানবন্দরে। এদিকে, হামলার ঘটনার পর থেকে ক্রাইস্টচার্চে বসবাসরত বাংলাদেশীদের মধ্যে এক ধরণের ভীতি ও শংকা তৈরি হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সহযোগিতার আশ্বাসের পরেও নানা ধরণের উদ্বেগ আর উৎকন্ঠা রয়েছে তাদের মধ্যে, বলছিলেন সেখানকার একজন বাসিন্দা ফারহানা আলম। "একটু ভয় লাগছে, কারণ আমি মুসলমান। কারণ কেউ স্বপ্নেও ভাবেনি নিউজিল্যান্ডে এমন কিছু হতে পারে। কিন্তু কিউইরা খুবই সাপোর্টিভ।" তিনি জানান, "আমরা যাদের সঙ্গে চলাফেরা করি বা কাজ করি, তারা বল��ে যে 'দিস ইজ নট দ্য নিউজিল্যান্ড উই নো'। তারপরও এখন কি হবে তাতো বলা যাচ্ছে না।" "আমরা তো ভয়ের মধ্যে আছি। অনেকে ভয়ে আছে যে এটার পরে এটার বিপক্ষে আবার অন্য কোন অ্যাটাক হয় কিনা। অথবা এই দলেরই অন্য কোন প্ল্যান আছে কিনা, সেটা নিয়ে সবারই উদ্বেগ আছে।" মিসেস আলম জানিয়েছেন, পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের ভয় না পাবার আহ্বান যেমন জানাচ্ছেন, তেমনি যেকোন বিপদে তাদের পাশে থাকার আশ্বাসও দিচ্ছেন। এদিকে, হামলা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পাওয়া বাংলাদেশ ক্রিকেট দল শনিবার রাতে দেশে ফিরে আসছে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: কম ঘুমে আয়ু কমে: রাতের ভালো ঘুম যেভাবে পাবেন আফ্রিদি, ইমরান, কোহলিরা হামলা নিয়ে কী বলছেন ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলাকারীর নানা 'ষড়যন্ত্র তত্ত্ব' ব্রেন্টন টারান্ট পাকিস্তান সফরে গিয়ে যা বলেছিলেন নিউজিল্যান্ডে আল নুর মসজিদে হামলার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৪৯জন বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। তবে, এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নিহতদের শনাক্ত বা তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। +text: চীনে খুচরা বিক্রেতাদের উপর প্রভাব পড়ছে কিন্তু এ সপ্তাহেই দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের এক বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু বেইজিং কেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটা বাণিজ্য চুক্তিতে আসতে ক্রমাগত চাপের মুখে পড়ছে? ধীরগতির অর্থনীতি বাণিজ্য যুদ্ধ চীনের অর্থনীতিকে হয়ত মন্দার দিকে নিয়ে নিয়ে যাবে না কিন্তু এটা অবশ্যই পরিস্থিতিকে খারাপের দিকে নিয়ে যাবে। গ্রোথ ডাটা গত সপ্তাহে যে প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে ১৯৯০ সালের পর এটাই চীনে সবচেয়ে কম গ্রোথ রেট। চীন সরকার দেশটিকে অর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালী করতে চেয়েছে কিন্তু এটাও ততটা চিন্তার বিষয় না। যতটা না অন্য তথ্য গুলো দু:চিন্তার কারণ হচ্ছে। ক্রেতা বা ভোক্তাদের অনুভূতি এবং খুচরা বিক্রয় খুব দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়ছে। ছোট এবং মাঝারি ধরণের কোম্পানি গুলো কম অর্ডার এবং মজুদের ব্যাপারে সেই ধাক্কাটা বুঝতে পারছে। আর এই চাপটাই পড়ছে কমিউনিস্ট পার্টির উপর। প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং যে এই বিষয়ে খুব কম নজর দিয়েছেন সেটাই প্রতিফলিত হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং এর বৈধতার ভিত্তি হল চীনকে শক্তিশালী রাখা। আরো পড়ুন: বাংলাদেশকে নিয়ে চীন-ভারত দ্বন্দ্ব: নেপথ্যে কী? ভারত ও চীনের সাথে কিভাবে ভারসাম্য করছে সরকার ভারত��� আটকে পড়া চীনা সৈনিক দেশে ফিরলেন ৫৪ বছর পর চীনে আমেরিকার প্রতিষ্ঠান গুলো একটা চুক্তি চায় এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাপের মধ্যে রয়েছে একটা চুক্তি করার জন্য। চীনে যেসব মার্কিন কোম্পানি রয়েছে তারা ট্রাম্প প্রশাসন তাদের ব্যবসার উপর যে শুল্ক আরোপ করেছে তার প্রভাব নিয়ে অভিযোগ করছে। কিন্তু তারা চাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেন একটা ভালো চুক্তি করে। চীনে আমেরিকার প্রতিষ্ঠান গুলো একটা চুক্তি চায় ওয়াশিংটন ডিসির আকিন গাম্প নামে একটি ল ফার্মের ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড পার্টনার স্টেফেন খো, বলেছেন "এই প্রশাসন শুল্কের মাধ্যমে মার্কিন অর্থনীতির স্বাস্থ্যকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিতে রাজি আছে"। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে চুক্তি হলে সেটা সবার জন্য ভালো হবে। যতদিন এই পরাশক্তি একে অপরের পণ্যের উপর শুল্ক আরোপ করতে থাকবে ততই ভোক্তাদের বেশি দামে পণ্য কিনতে হবে। কোম্পানি গুলো কম লাভ করবে। আর বিশ্ব অর্থনীতির গতি কমে যাবে। উভয় পক্ষই একটা চুক্তি করে সমাধানে আসতে এখন চাপের মধ্যে আছে। অন্যান্য খবর: সহিংস জিহাদের প্রতি আকর্ষণের পেছনে কী কাজ করে সুন্দরবনে স্যাটেলাইটযুক্ত কচ্ছপগুলো কিভাবে এলো? র চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়েছিল সেটা সাময়িক ভাবে বিরতিতে আছে। +text: "কত কী বলা হচ্ছে, তিনশো, সাড়ে তিনশো লোক মারা গেছে! আমরা জানতে চাই সত্যি কত লোক মারা গেছে, বা আদৌ কেউ মারা গেছে কিনা" - পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। ভারতের সরকার বলেছে, পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া এলাকার বালাকোটে বিমান থেকে বোমা ফেলে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে জঙ্গি সংগঠন জৈশ এ মুহম্মদের প্রশিক্ষণ শিবির। তবে কতজন কথিত জৈশ জঙ্গি ওই হামলায় মারা গেছেন, তা ভারত সরকার এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানায় নি। বিমান বাহিনী শুধু সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছে যে জৈশ এ মুহম্মদের প্রশিক্ষণ শিবিরের ওপরে ওই হামলায় অনেক জঙ্গি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে সিনিয়র কমান্ডার ও প্রশিক্ষকরাও ছিলেন। ওই শিবির পরিচালনা করতেন জৈশ এ মুহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের শ্যালক, এটাও বলেছে ভারতের বিমান বাহিনী। পাকিস্তানের সরকার প্রথম থেকেই বলছে, কোনো জঙ্গি আস্তানাই সেখানে ছিল না। ফাঁকা জায়গায় কিছু বোমা ফেলে গেছে ভারতীয় বিমান। একজনও তাতে মারা যায়নি। আ���্তর্জাতিক কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমও ওই অঞ্চল সফর করে এসে বলেছে যে ভারতীয় বিমান থেকে ফেলা বোমাগুলো কোনো টার্গেটে পড়েনি, বিশেষ কোনও ক্ষতি হয়নি ওই এলাকার। ওইসব প্রতিবেদনের সূত্রেই মমতা ব্যানার্জী এখন বালাকোট হামলার ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, "এয়ার স্ট্রাইকে কতজন মারা গেছে, কারা মারা গেছে, আসল ঘটনা কী, বিস্তারিত আমরা কিছুই জানি না। এইসব তথ্য তো দেশবাসী জানতেই পারে।" "কত কী বলা হচ্ছে, তিনশো, সাড়ে তিনশো লোক মারা গেছে! আমরা জানতে চাই সত্যি কত লোক মারা গেছে, বা আদৌ কেউ মারা গেছে কিনা। বোমটা কোথায় ফেলা হয়েছিল, আদৌ সেটা ঠিক জায়গায় পড়েছিল কিনা?" বালাকোটে ভারতীয় বিমান হামলার স্থানটি সাংবাদিকদের দেখাচ্ছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। পাকিস্তান দাবি করেছে একজনও ভারতীয় বোমায় একজনও মারা যায়নি তিনি বলেন, দেশের পক্ষে সকলেই আছে, কিন্তু জওয়ানদের রক্ত নিয়ে কেউ রাজনীতি করবে, এটা তিনি মেনে নিতে পারবেন না। কংগ্রেস সহ সব বিরোধী দলগুলিই কয়েকদিন ধরে অভিযোগ করছে যে পুলওয়ামায় জঙ্গি হানা আর তারপরে বালাকোটে বিমান হানা এবং তার পাল্টা পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর ভারতে বোমাবর্ষণ - গোটা ঘটনা নিয়ে বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদী রাজনীতি করছেন ভোটের দিকে তাকিয়ে। মিজ ব্যানার্জী বলছেন, "রাজনীতির প্রয়োজনে আমরা যুদ্ধ চাই না। দেশের প্রয়োজনে যদি যুদ্ধ হয়, তাহলে আমরা দেশের সাথে আছি। কিন্তু একটা নির্বাচনে জেতার জন্য আমরা যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তি চাই।" কাশ্মীর উত্তেজনা যা বলছেন দুই দেশের ক্রিকেটাররা যেভাবে কাশ্মীরে আটক হয়েছিলেন ভারতীয় পাইলট পাকিস্তানের সীমানার ভেতরে ঢুকে ভারতীয় বিমান বাহিনী মঙ্গলবার যে হামলা চালিয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য দেশের মানুষকে জানানো হোক বলে দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। +text: ভারতে মাওবাদী বিরোধী অভিযান। ফাইল ছবি সারকেগুডা গ্রামের ওই ঘটনাটিকে এনকাউন্টার বা সংঘর্ষের ঘটনা বলে সাজানোর চেষ্টা হয়েছিল বলে তদন্ত রিপোর্টে জানানো হয়েছে, যদিও বাস্তবে গ্রামবাসীদের দিক থেকে সেদিন কোনও প্রতিরোধই ছিল না। ভারতের মানবাধিকার আইনজীবী ও অ্যাক্টিভিস্টরা বলছেন, এই প্রথম ভারতের কোনও সরকারি তদন্ত কমিশন মাওবাদী এলাকায় সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর দিকে আঙুল তোলার সাহস দেখাল। যদিও সেদেশের বেশির ভ���গ সংবাদমাধ্যমই এই রিপোর্ট নিয়ে সম্পূর্ণ নীরব। ভারতে মাওবাদী বিদ্রোহীদের ঘাঁটি বলে পরিচিত বস্তারের বিজাপুর জেলার একটি গ্রাম সারকেগুডাতে ২০১২ সালের জুন মাসে ১৭ জন আদিবাসী নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ছটি শিশুও ছিল। পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে ভারতের একটি মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকার গ্রামে আদিবাসীদের প্রতিবাদ সেই ঘটনার রেশ দিল্লিতেও পৌঁছায়, যার জেরে বিচারপতি ভি কে আগরওয়ালের নেতৃত্বে বসানো হয় একটি তদন্ত কমিশন। সেই কমিশনের রিপোর্ট সদ্যই ছত্তিশগড় সরকারের কাছে জমা পড়েছে - আর রিপোর্টের বিষয়বস্তু সরাসরি হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত করেছে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী সিআরপিএফ ও রাজ্য পুলিশকে। বস্তারের বামপন্থী রাজনীতিবিদ ও সিপিআই দলের নেতা মনীশ কুঞ্জম ওই রিপোর্টটি দেখেছেন। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "কমিশন কিন্তু মেনে নিয়েছে যে ওই নিরীহ আদিবাসীরা সন্ধেবেলায় গ্রামের মাঝখানে একসঙ্গে বসে গ্রামেরই নানা বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করছিলেন, তখনই তাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়।" "এই রিপোর্টের বিশেষত্ব হল, আমি এত বছর ধরে এই অঞ্চলে রাজনীতি করছি - এই প্রথম দেখলাম কোনও তদন্ত রিপোর্টের রায় গ্রামবাসীদের পক্ষে গেল, আসল সত্যিটা কী ঘটেছে সেটা তুলে ধরা হল।" বস্তারের মানবাধিকার আইনজীবী শালিনী গেরা রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে ওই গ্রামবাসীরা যে মাওবাদী ছিল তার কোনও প্রমাণ মেলেনি, আর তাদের গুলিও চালানো হয়েছিল খুব কাছ থেকে - সম্ভবত একেবারে ঠান্ডা মাথায়। তবে ঘটনা হচ্ছে, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ছাড়া ভারতের প্রথম সারির কোনও সংবাদপত্র বা টিভি চ্যানেলই এই তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেনি। 'জগদলপুর লিগাল এইড' সংস্থার হয়ে বহুদিন ধরে বস্তারে নির্যাতিত মানুষদের আইনি সহায়তা দিয়ে আসছেন শালিনী গেরা। তিনিও মনে করছেন মাওবাদী এলাকায় গ্রামবাসীদের একযোগে শাস্তি দেওয়ার যে নীতি নিরাপত্তা বাহিনী অনুসরণ করে, বিজাপুরের অভিযানও ছিল তারই অংশ। শালিনী গেরা বলছিলেন, "বিজাপুরে গিয়েও সরেজমিনে আমরা দেখেছি এবং বুঝেছি এই ধরনের ঘটনা কোনও একজন বা দুজন পুলিশ কর্মকর্তার হঠাৎ মাথা থেকে বেরোল আর অভিযানে বেরিয়ে পড়া হল, ব্যাপারটা মোটেই সেরকম নয়।" বস্তারের একটি আদিবাসী গ্রামে দিনের শেষে ঘরে ফিরছেন মহিলারা "এ��� পেছনে একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে, আশেপাশের গ্রামগুলোতেও ভয় বা আতঙ্ক তৈরি করার উদ্দেশ্য থাকে।" "সুপরিকল্পিতভাবে শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা থাকে - যে মাওবাদীদের সঙ্গে ভিড়লে তাদেরও এই ধরনের পরিণতিই হবে, তাদেরও সমষ্টিগতভাবেই এরকম শাস্তি পেতে হবে।" ভারতে মাওবাদী-বিরোধী অভিযানে বহু বছর ধরে নেতৃস্থানীয় ভূমিকায় ছিলেন বিএসএফের সাবেক প্রধান প্রকাশ সিং। ভারতে পুলিশ বাহিনীতে সংস্কারের কান্ডারী হিসেবে পরিচিত, সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা অবশ্য বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন ভারতের কোনও নিরাপত্তা বাহিনী এ দেশের নাগরিকদের ওপর ইচ্ছে করে গুলি চালিয়েছে এ কথা তিনি বিশ্বাস করেন না। তবে তিনি স্বীকার করছেন, "মাওবাদী দমনে যে ডকট্রিন গৃহীত হয়, সেই থিওরির সঙ্গে বাস্তবে তার প্রয়োগে অবশ্য অনেক সময়ই ফারাক থেকে যায়।" বিএসএফের সাবেক প্রধান ও পুলিশ বাহিনীর মহাপরিচালক প্রকাশ সিং প্রকাশ সিংয়ের কথায়, "এটা নির্ভর করে সেই সময় বাহিনীর নেতৃত্বে কে বা কারা আছেন, বাহিনীকে কী ব্রিফিং দেওয়া হয়েছে ইত্যাদি নানা ফ্যাক্টরের ওপর।কিন্তু সাধারণত তারা কখনওই নিজেদের দেশের লোকের ওপর এভাবে গুলি চালাবে না, যদি না গোয়েন্দা তথ্যে গলদ থাকে।" "বিজাপুরে ঠিক কোথায় গন্ডগোল ছিল আমি জানি না, কিন্তু এটুকু জানি আমাদের ফোর্স মোটেই ট্রিগার হ্যাপি নয়, বরং তারা বিশ্বের বহু দেশের বাহিনীর চেয়ে অনেক সংযত। আমেরিকার নিরাপত্তা বাহিনীর চেয়ে তো অনেক ভাল, যারা সব সময় এধরনের ক্ষেত্রে কোল্যাটারাল ড্যামেজ বলে আড়াল খোঁজে!" সারকেগুডার হত্যাকাণ্ডে তদন্ত কমিশন অবশ্য দোষীদের শাস্তির ব্যাপারে কোনও সুপারিশ করেনি। কিন্তু মানবাধিকার আইনজীবী ও অ্যাক্টিভিস্টরা চাইছেন এই রিপোর্ট হিমঘরে চালান না-করে যেন অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আরো পড়তে পারেন: ঢাকার ৪৪ শতাংশ মানুষ ভুগছে বিষণ্ণতায় কোন কোন দেশে বিমান চলাচল সবচেয়ে বিপদজনক? 'বস্তারে আদিবাসীদের ঠাণ্ডা মাথায় খুন করা হয়েছিল' ভারতের ছত্তিশগড়ে মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় প্রায় সাড়ে সাত বছর আগে ১৭ জন আদিবাসীর নিহত হওয়ার এক ঘটনায় নিরাপত্তাবাহিনী সম্পূর্ণ বিনা প্ররোচনায় গুলি চালিয়েছিল বলে একটি বিচারবিভাগীয় তদন্তে উঠে এসেছে। +text: জাপান সাগরে মিঙ্কি এবং হাম্পব্যাক জাতের তিমি যা���ায়াত করে নীগাটা বন্দর থেকে দ্রুত গতি সম্পন্ন হাইড্রোফয়েল জাহাজটি শনিবার স্যাদো আইল্যান্ডে ফিরছিল। এই গিংগা ফেরি সার্ভিসটি পরিচালনা করে স্যাদো স্টিম শিপ কোম্পানি। তারা জানিয়েছে, ঘটনাটির পর নিজে থেকেই ফেরিটি তার গন্তব্যে পৌছাতে সক্ষম হয়, যদিও নির্ধারিত সময়ের চেয়ে এক ঘণ্টা দেরী হয়েছে। দুর্ঘটনায় আহতের হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। কোস্ট গার্ড বলছে যে, তাদের মধ্যে অন্তত ১৩ জন গুরুতর আঘাত পেয়েছে যদিও তাদের জ্ঞান হারাননি। সে সময় জাহাজে ২১২ জন যাত্রী এবং চারজন ক্রু ছিলেন। তিমির সাথে সংঘর্ষে জাহাজটির হাইড্রোফয়েল উইং এর একটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফেরিটির চালক বলছেন যে, সমুদ্রযানটি কোন একটা কিছুকে আঘাত করে, যার ফলে জাহাজের স্টার্নে ১৫ সেন্টিমিটারের ছয় ইঞ্চি একটি ফাটল তৈরি হয়। জাতীয় গণমাধ্যম এনএইচকে একজন মেরিন এক্সপার্টের বরাত দিয়ে বলছে যে, ক্ষতির পরিমাণ দেখে মনে হচ্ছে জাহাজটির একটি তিমির সাথে ধাক্কা লেগেছিল। এক বিবৃতিতে, ফেরি চালক যাত্রীদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেছেন যে জাহাজটির কোনো একটি সামুদ্রিক জীবের সাথে সংঘর্ষ ঘটেছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে ফেরিটির একজন যাত্রী বলেছেন, "সামনের সিটের সাথে গিয়ে আমার ঠোঁটে আঘাত লাগে। আশেপাশের সব যাত্রীই তখন ব্যথায় কাতরাচ্ছিল।" জাহাজটি জেট ইঞ্জিনের সাহায্যে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে। তিমির সাথে সংঘর্ষে জাহাজটির হাইড্রোফয়েল উইং এর একটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বছরের এ সময়টিতে জাপান সাগরের এই অঞ্চলে মিঙ্কি এবং হাম্পব্যাক জাতের তিমি ঘনঘন যাতায়াত করে থাকে। জাপানে সাগরে যাত্রী পারাপারের সময় একটি ফেরি অজানা প্রাণীর সঙ্গে ধাক্কা লেগে অন্তত ৮০ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। পরে জানা যায় অজানা প্রাণীটি ছিল একটি তিমি। +text: ক্যাসিনো টেবিল। এসময় পাঁচজন ম্যাজিস্ট্রেট ক্যাসিনোগুলো সিলগালা করার পাশাপাশি সেখান থেকে ১৮২ জনকে আটক করে। তাদের প্রত্যেককে ছয় মাস থেকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে র‍্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত। বৃহস্পতিবার আটকদের আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে। এছাড়া জব্দ করা হয় প্রায় ৪০ লাখ নগদ টাকা, জাল টাকা, জুয়া খেলার সরঞ্জাম, ইয়াবাসহ দেশি-বিদেশি মদ। এই ক্যাসিনোগুলো হল- ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাব, মতিঝিলের ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, গুলিস্তানের মুক্��িযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র এবং বনানীর গোল্ডেন ঢাকা বাংলাদেশ। শুরুতে ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাবে র‍্যাব অভিযান চালিয়ে, সেখান থেকে ১৪২ জনকে গ্রেফতার করে। তাদের প্রত্যেককে ছয় মাস থেকে এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। সেখান থেকে নগদ ২৪ লাখ ২৯ হাজার টাকা, বিপুল পরিমাণ জুয়ার সরঞ্জাম, দেশি-বিদেশি মদ, ইয়াবা উদ্ধার করার কথা জানান অভিযানের নেতৃত্বে থাকা র‍্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। এক সময়কার খেলার ক্লাব বা ক্রীড়া সংগঠনের অফিস এখন অবৈধভাবে এ ধরণের জুয়ার আসর বসানো হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। "এগুলো একটাও স্বীকৃত ক্যাসিনো না। আর বাংলাদেশের আইনে কোন ক্যাসিনোকে লাইসেন্স দেয়ার বিধান নেই। মূলত ক্রীড়া সংগঠনের আড়ালে এসব জুয়া খেলা আর মাদক সেবন চলছে। ক্যাসিনো সম্পূর্ণ অবৈধ। আমরা যাদেরকে মাদক সেবন করা অবস্থায় পেয়েছি তাদেরকে আইনানুযায়ী জেল দেয়া হয়েছে।" বলেন মিঃ আলম। অবৈধভাবে এই ক্যাসিনোটি পরিচালনার দায়ে ইয়ংমেনস ক্লাবের মালিক খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়াকে পরে গুলশানের বাসভবন থেকে আটক করে র‍্যাব। ক্যাসিনোর জুয়া খেলার স্লট মেশিন। সেখান থেকে মতিঝিলের আরামবাগের ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের ক্যাসিনোতে র‍্যাব অভিযান চালাতে গেলে দেখা যায় যে আগেই খবর পেয়ে সবাই ক্লাব ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে নগদ প্রায় ১০ লাখ টাকা, জুয়ার সরঞ্জাম, সাড়ে ২০ হাজার টাকার জাল নোট, বিপুল পরিমাণ মদ ও মাদক জব্দ করা হয়। একই সময়ে গুলিস্তানের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্রের অবৈধ ক্যাসিনোয় অভিযান চালিয়ে ৪০ জনকে গ্রেফতার করে র‌্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত। তাদের প্রত্যেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। সেখান থেকে জুয়ার সরঞ্জাম, কষ্টি পাথরের মূর্তি মদের পাশাপাশি সাড়ে তিন লাখ টাকা জব্দ করা হয়। সবশেষে বনানীর গোল্ডেন ঢাকা বাংলাদেশ ক্যাসিনোতে র‌্যাব-১ অভিযান চালাতে গেলে সেটি তালাবন্ধ অবস্থায় পায়। পরে তারা ক্যাসিনোটি সিলগালা করে দিয়ে আসেন। আরও পড়তে পারেন: যৌন হয়রানির অভিযোগ: রিপাবলিকান পদ থেকে ক্যাসিনো মোগলের পদত্যাগ বাংলাদেশি পর্যটক আকর্ষণে পশ্চিমবঙ্গের উদ্যোগ ঢাকা হবে 'হালাল পর্যটনের' শহর: এর অর্থ কী? ঢাকায় এই ক্যাসিনোগুলো গড়ে ওঠার গোয়েন্দা তথ্য র‍্যাবের কাছে কয়েক মাস আগে এলেও তারা এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য ��্রমাণ সংগ্রহের পর এই অভিযানে নামেন। যারা এ ধরণের অবৈধ ব্যবসার পেছনে জড়িত তাদের সবাইকে একে একে আটক করা হবে বলে বিবিসি বাংলাকে জানান সারওয়ার আলম। এর পেছনে কোন বিদেশি নাগরিক জড়িত আছে তাদের ওয়ার্ক পারমিট চেক করা হবে, অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান তিনি। গতকাল ঢাকার চারটি ক্যাসিনোতে অভিযান চালিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের একটি দল। +text: ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী ১৯৯১ সালের ২১শে মে দক্ষিণ ভারতে এক বোমা হামলায় নিহত হন। ওই ব্যক্তি এখন নিজেই বলছেন তিনি "মৃত্যুর অনুমতি" চান। রাজীব গান্ধীর হত্যা মামলায় শ্রীলঙ্কার বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন তামিল টাইগার্সের যে সাত সদস্যকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে, রবার্ট পায়াস তাদের একজন। রবার্ট পায়াস তামিলনাডুর সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তাকে যেন 'যন্ত্রণাহীনভাবে মেরে ফেলা হয়' বা 'স্বেচ্ছায় মৃত্যুদণ্ডে'র অনুমতি দেয়া হয়। এই অনুমতি চেয়ে মি: পায়াস বলেছেন যে, তার পরিবারের কেউই তাকে আর দেখতে আসেন না। তার জেল থেকে বের হওয়ারও আর কোনো আশা নেই। ২৬ বছর কারাগারে থাকার পর জীবনের এখন আর কোনো অর্থ নেই বলছেন রবার্ট পায়াস। যদিও ভারতের তামিলনাডু সরকার চেয়েছিল এই সাতজনকেই মুক্তি দিতে কিন্তু তার বিরুদ্ধে আবেদন করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। আর ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট তামিলনাডু সরকারকে এক নোটিশ জারি করেন যে আসামিদের সাজা মওকুফের কোনো সুযোগ নেই। এনডিটিভি তাদের প্রতিবেদনে বলছে রাজ্য সরকারের কাছে লেখা ওই চিঠিতে মি: পায়াস বলেছেন "তামিলনাডু সরকার আমাদের সমর্থন করলেও কেন্দ্রী সরকারের কাছ থেকে কোনো ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তারা আমাদের মুক্তির বিষয়টা এতই নীরব, মনে হচ্ছে যে আমার জীবন যেন কারাগারেই শেষ হয় সেটাই তারা চায়"। রাজীব গান্ধীকে হত্যায় জড়িত সবাই শ্রীলঙ্কার বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন তামিল টাইগার্সের সদস্য। ওই হত্যা মামলায় তিন আসামীকে মৃত্যুদণ্ড ও চারজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছিল আদালত। পরে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের প্রাণভিক্ষার আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী ১৯৯১ সালের ২১শে মে দক্ষিণ ভা���তে এক বোমা হামলায় নিহত হন। নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেয়ার সময় তাঁর ওপর এক তামিল গেরিলা এই আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায়। আরো পড়ুন: কালো ব্যাজ পরে ঈদের নামাজ পড়ার আহ্বান পশ্চিমবঙ্গে রাজপরিবারের কেউ রাজা রানী হতে চায় না: প্রিন্স হ্যারি সৌদি আরবের নতুন যুবরাজ সম্পর্কে পাঁচটি তথ্য ধ্বংস করে দেয়া হলো বিখ্যাত আল-নূরি মসজিদ ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে এক ব্যক্তি ২৬ বছর ধরে কারাদণ্ড ভোগ করছেন। +text: পরকীয়া প্রেমের শাস্তি হওয়া উচিত কিনা সেটি নিয়ে আদালতের প্রশ্ন আছে। এই প্রশ্ন তুলেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী একটি অপরাধ এবং যে পুরুষ এ ধরণের সম্পর্কে যুক্ত থাকবেন বলে আদালতে প্রমাণিত হবে, তাঁর সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের ব্যবস্থা রয়েছে দণ্ডবিধিতে। কিন্তু প্রায় দেড়শ বছর আগে দণ্ডবিধিতে যুক্ত হওয়া ওই ধারার যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে সর্বোচ্চ আদালত। "দেড়শ বছর আগে যেভাবে নারী-পুরুষের সম্পর্ককে দেখা হতো, সেটা তো এখন হয় না,'' বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চ্যাটার্জী। মিঃ চ্যাটার্জী বলেন, নারী-পুরুষ উভয়েই এক সঙ্গে কাজ করেন, হয়তো অফিসের প্রয়োজনে বাইরেও যান একসাথে। তাই মেলামেশার ধরণ যেমন পাল্টেছে, তেমনই বদল এসেছে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতেও। ''পরকীয়া শব্দটাকে আগে যেভাবে দেখা হতো, এখন আমরা নিশ্চয়ই সেভাবে দেখি না। অন্যদিকে পরিবার, সমাজ - এগুলোকেও রক্ষা করার প্রয়োজন। ''তাই দেড়শ বছরের পুরনো আইনের এই ধারাটার বদল ঘটানো প্রয়োজন - সব দিকে সামঞ্জস্য রেখে," বলেন মিঃ চ্যাটার্জী। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের এক বেঞ্চ বুধবার পরকীয়া প্রেম নিয়ে কোনও চূড়ান্ত নির্দেশ না দিলেও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: বিআরটিএ চিত্র: আন্দোলনের পর বিবিসির চোখে নিরাপদ সড়ক: অভিযানের জন্য বসুন্ধরা টার্গেট কেন? বন্দী আনাকে দিয়ে যৌন ব্যবসা করানোর কাহিনী অধ্যাপক শাশ্বতী ঘোষ, নারী অধিকার আন্দোলনের কর্মী। কেরালার এক বাসিন্দা কোর্টের কাছে আবেদন করেছিলেন যে ৪৯৭ নম্বর ধারাটি দণ্ডবিধি থেকে বাতিল করা হোক। সেই মামলার শুনানিতেই আদালত প্রশ্ন তোলে যে একটি সম্পর্কে দুজন জড়িত হলেও তাঁদের মধ্যে পুরুষ মানুষটির সাজা হবে, আর নারীর সাজা হবে না, এটা অনুচিত। কলকাতা হাইকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও নারী অধিকার আন্দোলনের কর্মী ভারতী মুৎসুদ্দি বিবিসি বাংলাকে বলেন, "প্রশ্নটা অনেকদিন থেকেই উঠেছে যে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত পুরুষটির সাজা হবে অথচ নারীটির কোনও সাজা হবে না কেন? যে নারী তাঁর স্বেচ্ছাচারের ফলে অন্য এক নারীর সংসার ভাঙ্গছেন, সেটা তো অমার্জনীয় অপরাধ। পুরুষটির যেমন সাজা দেওয়ার বিধান রয়েছে, এরকম সম্পর্কে জড়িত নারীটিরও শাস্তি হওয়া উচিত বলেই আমি মনে করি।" নারী অধিকার আন্দোলনের কর্মী, অধ্যাপক শাশ্বতী ঘোষ-এর মতে, "এটা ঠিকই, যদি কোনও বিবাহিতা নারী নতুন করে কোনও সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তার দায়-দায়িত্ব পুরুষমানুষটির যেমন, তেমনই ওই নারীরও। সেই দায়িত্ব তো নারীটিকে নিতেই হবে। সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লাম, তার ফল ভোগ করলাম, কিন্তু দোষী হল শুধু পুরুষটি, সেটা তো ঠিক নয়।" যদি সে নারীর স্বামীর সম্মতি থাকে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কটিতে, তাহলে কি তা অপরাধ বলে গণ্য হবে না? প্রশ্ন বিচারপতিদের। তাঁরা এটাও মন্তব্য করেছেন, এই ধারাটিতে শুধু বিবাহিত নারীদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার প্রসঙ্গ থাকবে কেন? কোনও পুরুষ তো অবিবাহিত নারী বা বিধবা নারীর সঙ্গেও সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেন, সে ক্ষেত্রে আইনে কেন কিছু বলা থাকবে না? এই প্রসঙ্গে মিজ মুৎসুদ্দির কথায়, "যদি কোনও নারী ব্যভিচারে লিপ্ত হন, সে স্বামীর অনুমতি নিয়েই হোক বা বিনা অনুমতিতে, সাজা তাঁরও হওয়া দরকার। আইনটা থাকাই উচিত, না হলে পারিবারিক-সামাজিক যে মূল্যবোধগুলো রয়েছে, সেগুলো রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। তবে এটাও ঠিক যে আইন করলেই যে সবসময়ে তা কার্যকর হয় তা না, কিন্তু আইনের বিধান থাকলে মানুষ অন্তত ভয় পাবে যে এধরণের সম্পর্কের ফলে তাঁদের জেল হতে পারে।" এই মামলাটির শুনানি চলাকালীন ভারত সরকার জানিয়েছিল, ৪৯৭ ধারাটি তুলে দেওয়া হলে বিবাহ এবং পরিবার নামের যে ব্যবস্থা সমাজকে ধরে রেখেছে, তা ধ্বংস হয়ে যাবে। শাশ্বতী ঘোষের মন্তব্য, "নৈতিকতা থাকা দরকার। কিন্তু সবসময়ে কি তাকে আইন দিয়ে বেঁধে রাখা যায়? পরকীয়া প্রেম কি আদৌ অপরাধ হতে পারে? আমার তো মনে হয় না। মন দেওয়া নেওয়া যে কোনও নারী পুরুষের মধ্যেই হতে পারে - তিনি বিবাহিত অথবা অবিবাহিত যাই হোন না কেন। সেটাকে ক্রিমিনালাইজ করা কখনই উচিত নয়।" তবে আইনজীবী মি. চ্যাটার্জী মনে করেন, এই বিধানটি একেবারে তুলে দিলে তা ব্যভিচারের আগলটা খুলে দেবে গোটা সমাজে। সেটাও অনুচিত হবে। তাই তিনি মনে করেন , যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরকীয়া বা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককে নতুন আইনি দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা উচিত। পরকীয়া প্রেম কি আদৌ অপরাধ, নাকি একটি সামাজিক সমস্যা? +text: মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ দুই ইনিংসেই এমনভাবে আউট হয়েছেন যেন দ্রুত রান তুলতে হবে কথাগুলো বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর। বাংলাদেশের টেস্ট দলের কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে চান এই কোচ। সেই লক্ষ্যে একদম নতুন দল গঠনের কথাই ইঙ্গিত দেন ডমিঙ্গো। তিনি মনে করছেন এখন যেমনটা ফলাফল আসছে তার চেয়ে খুব বেশি খারাপ হবে না যদি নতুন আঙ্গিকে নতুন ক্রিকেটারদের নিয়ে দল গঠন করা যায়। "আমাকে চিহ্নিত করতে হবে কোন কোন খেলোয়াড় দলকে সামনে এগিয়ে নিতে পারবে। যদি আমাদের নতুন মুখ নিয়ে এগোতে হয়, কিছুটা সময় ভুগতে হয়, আমার মনে হয় বর্তমানে যা হচ্ছে সেটির চেয়ে খারাপ কিছু হবে না।" ঠিক কী ধরণের পরিবর্তন আনা প্রয়োজন সেটা একটু দেখার চেষ্টা করেছি। বাংলাদেশের সাংবাদিকরা এই মুহুর্তে ইন্দোরে অবস্থান করছেন দলের সাথে তারা ঘোরাঘুরি করছেন। বাংলাদেশের একজন টেলিভিশন সাংবাদিক মাজহারুল ইসলাম মিঠুনের সাথে কথা বলছিলাম। মাঠ থেকে ও অনুশীলনের জায়গা থেকে মি. মিঠুন জানিয়েছেন, "বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ঘাটতি হচ্ছে মনোবলের অভাব। টেস্ট ক্রিকেটে যে মানসিকতা নিয়ে খেলতে নামা প্রয়োজন সেই একাগ্রতা দেখা যায়নি।" মাঠে খেলার মধ্যে জয়ের জন্য খেলা আর হার মেনে নিয়ে খেলার একটা ব্যাপার থাকে, মি: মিঠুন মনে করেন বাংলাদেশ লড়াইই করেনি। "শুরু থেকেই মনে হয়েছে একটা ব্যাকফুটে পড়ে থাকা দল খেলতে নেমেছে যাদের আদতে টেস্ট খেলার ইচ্ছাই নেই।" মাঠে একটা দলের সাথে একটা দলের শক্তিমত্তার পার্থক্য থাকাটা ধ্রুব কিন্তু সেটার জন্য যদি হেরে যাওয়ার মানসিকতা নিয়ে নামা হয় সেটা ক্রিকেটের জন্য মঙ্গলজনক নয় মনে করেন তিনি। ক্রিকেটারদের সাথে রাসেল ডমিঙ্গো বাংলাদেশের ক্রিকেট দলকে অনেকটাই দিকনির্দেশনাহীন বলে মনে করছেন মাজহারুল ইসলাম মিঠুন। যদি সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য শুনে থাকেন সেখানে স্পষ্টতই এক��া বোঝাপড়ার অভাব দেখা যায়, দলের পরিকল্পনা, দলের লক্ষ্য সম্পর্কে খুব কমই ধারণা দিতে পেরেছেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক। রাসেল ডমিঙ্গোর সংবাদ সম্মেলনের সুত্র ধরে ঠিক কী ধরণের পরিবর্তন চান তিনি, মি. মিঠুনের কাছে প্রশ্ন রাখি, কোনো আঁচ কি পেয়েছেন তিনি? "কারা টেস্ট খেলতে চায় ও কারা খেলতে চায় না, টেস্ট নিয়ে কারা ভাবেন। এই ধরণের ক্রিকেটার প্রয়োজন বলছেন ডমিঙ্গো। হয়তো টেস্ট খেলার অনাগ্রহ দেখিয়েছেন ক্রিকেটাররা।" ঘরোয়া ক্রিকেটের উইকেটের কাঠামো ও ক্রিকেটারদের প্রবণতার পরিবর্তন করতে চান ডমিঙ্গো। তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটের যে সংস্কৃতি এখানে যারা কোচ হিসেবে আসেন, তাদের পরামর্শ বা দিকনির্দেশনা তেমন আমলে নেয়া হয় না ক্রিকেট বোর্ডে। মাজহারুল ইসলাম মিঠুন বলেন, "বোর্ডের এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে, এখন বিষয়গুলো অন্যভাবে দেখা হবে, ডমিঙ্গো কী বলছেন সেটা ব্যাপার না। এই কাজগুলো আজ হোক কাল হোক করতে হবেই।" তিনি বলেন, "এখানে মধ্য প্রদেশের এক ক্রিকেট কর্মকর্তার সাথে কথা বলে ভারতের এই এক নম্বর হওয়ার রহস্য টের পেলাম, দল নির্বাচনে স্বচ্ছতা, প্রত্যেক ব্যক্তির জবাবদিহিতা ও যথাযথ উইকেট তৈরি।" ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্নভাবে ফাস্ট বোলিং, বাউন্সি ও স্পিনবান্ধব সব রকমের উইকেট তৈরি করা হয়েছে যাতে রঞ্জি ট্রফি খেলার সময়ই বিভিন্ন দেশের বৈচিত্র্যময় উইকেটে খেলার ধরণগুলো রপ্ত করতে পারেন ব্যাটসম্যানরা ও বোলাররা। ভারতের জাতীয় দল থেকে কেউ বাদ পড়লে, বা নতুন করে দলে ঢুকলে সংবাদ সম্মেলনে বেশ স্বচ্ছ ও সাবলীল উপায়ে জানিয়ে দেয়া হয় যে ঠিক কী কারণে এই সংযুক্তি বা অব্যহতি। বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে যখন দল ঘোষণা করা হয় তখন শিভাম দুবেকে নেয় ভারত। তৎক্ষণাত জানিয়েও দেয়া হয়েছিল যে বোলিং এর পাশাপাশি দ্রুত রান নেয়ার দক্ষতার কারণেই শিভাম দুবেকে নেয়া হয়েছিল। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতের করুন নায়ার একটি ত্রিশতক হাঁকান। ভারতের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে এক ইনিংসে ৩০০ রান তোলেন তিনি। এর আগে ভিরেন্দর সেহওয়াগ এই কাজ করেন। ক্রিকেট সম্পর্কে আরও কিছু খবর: কিন্তু এই ৩০০ করার ৪ ইনিংস পরেই তাকে দল থেকে বাদ দেয়া হয় ও আজিঙ্কা রাহানেকে দলে ফেরত আনা হয়। মূলত আজিঙ্কা রাহানের চোটের কারণেই দলে সুযোগ পেয়েছিলেন না��়ার। নির্বাচকরা এক ইনিংস দিয়ে ভাবেননি, লম্বা পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই আজিঙ্কা রাহানে দলে ফিরেছেন এবং নিয়মিত রান করেছেন। এই মুহুর্তে বিশ্ব ক্রিকেটের টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ের পাঁচ নম্বরে আছেন রাহানে। এক থেকে দশের মধ্যে আছেন চারজন ভারতীয় ক্রিকেটার- ভিরাট কোহলি, চেতেশ্বর পুজারা, আজিঙ্কা রাহানে ও রোহিত শর্মা। খুব দ্রুতই মায়াঙ্ক আগারওয়ালও এই তালিকায় জায়গা করে নেবেন। ২০১৮ সালে অভিষেক হয় আগারওয়ালের, যিনি ৮টি টেস্ট খেলে ৮৫৮ রান তুলেছেন। ৩টি শতক লেখা তার নামের পাশে যার মধ্যে দুটিই দ্বিশতক। বাংলাদেশের টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলের মধ্যে আদতে খুব বেশি পার্থক্য নেই। মূলত নানা সময় ক্রিকেটারদের একটি বা দুটি ইনিংস দেখেই প্রভাবিত হওয়ার বিষয়টিও লক্ষ্য করা গিয়েছে। যেমন ইমরুল কায়েসের ক্ষেত্রে ভারত সফরে হয়েছে। জাতীয় লিগে সম্প্রতি ইমরুল কায়েস একটি দ্বিশতক হাকান এরপরই তাকে দলে নেয়া হয়েছে তৎক্ষণাৎ। অনেক সময়ই কোনো একটি নির্দিষ্ট সিরিজ বা সফরে খুব ভালো খেললে লম্বা সময়ের জন্য জাতীয় দলে টিকে যান ক্রিকেটাররা। যেমন মেহেদি হাসান মিরাজ, ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টিতে 'ইউটিলিটি' ক্রিকেটারের ভূমিকা পালন করলেও টেস্ট ক্রিকেটে ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক সিরিজ ছাড়া তেমন ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়নি। ২০১০ সালে শতক হাকানোর পর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ২০১৮ সালে টেস্ট শতক হাঁকান। বোলিংয়েও ভূমিকা না রাখা ক্রিকেটার হিসেবে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে দীর্ঘদিন ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির পারফরম্যান্স বিবেচনা করে টেস্ট দলেও নিয়মিত জায়গা দেয়া হয়েছে। নতুন ক্রিকেটারদের সাধারণত অনুকুল পরিবেশে অভিষেক করানো হয় যাতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জড়তা কাটিয়ে উঠতে পারেন, যেমন ভারতের ওপেনার পৃথ্বী শকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০১৮ সালে ঘরের মাটি রাজকোটে 'ব্রেক' দেয় ম্যানেজমেন্ট। বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় ক্রিকেটার নাজমুল হোসেন শান্তকে অভিষেক করানো হয় নিউজিল্যান্ডের মাটিতে যেখানে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের জন্য স্বাভাবিক খেলা বেশ কঠিন। আরো খবর: পেঁয়াজের দাম নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ আর ট্রল ব্রিটিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ধামাচাপার অভিযোগ চট্টগ্রামে গ্যাস বিস্ফোরণে ৭ জন নিহত "কোনো সন্দেহ নেই দলের কাঠামোগত বদল আনতে ���বে। না হলে ফল একই হতে থাকবে। নির্বাচকদের সঙ্গে বসে সামনে এগোনোর পথ খুঁজে বের করতে হবে।" +text: করাচির এক চুল কাটার সেলুন। গত জুন মাসে এই ঝুঁকি আরও বেড়ে গিয়েছিল যখন প্রধান শহরগুলোর হাসপাতালগুলি রোগীদের উপচে পড়ছিল। বড় হাসপাতালগুলির ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটগুলো বোঝাই হয়ে গিয়েছিল এবং একটি বেড খুঁজে পাওয়ার জন্য রোগীর আত্মীয়স্বজন ছুটোছুটি করছিল। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ পরে রোগীর ভর্তি সংখ্যা হঠাৎ করেই কমে যায়। প্রথম দিকে অনেক ডাক্তারের মনে এ নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছিল। তারা ভাবছিলেন, হাসপাতালে রোগীদের 'বিষ' দিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে বলে যে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়িয়েছে তার জন্যই কি রোগীরা হাসপাতালে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে? কিন্তু পরের কয়েক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা ক্রমাগত কমতে থাকে। প্রায় ২৩ কোটি মানুষের দেশ পাকিস্তানে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা এপর্যন্ত প্রায় ৬,০০০ জন। অনেক পশ্চিমা দেশের তুলনায় পাকিস্তানের অবস্থা ভাল। যেমন, ব্রিটেনের জনসংখ্যা প্রায় ছয় কোটি ৭০ লক্ষ। সে দেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা এপর্যন্ত ৪১ হাজারেরও বেশি। পাকিস্তানের প্রতিবেশী দেশ ভারতের প্রধান দুই শহর দিল্লি এবং মুম্বাইয়ে মৃত্যুর হার অনেক বেশি।আর পাকিস্তানের এই দৃশ্যমান সাফল্য এসেছে লকডাউনের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরোধিতা থাকা সত্ত্বেও। তিনি বলেছিলেন, এটা করা হলে 'দেশের মানুষ না খেয়ে থাকবে।' লকডাউনের মধ্যে পেশাওয়ারে চলছে সিনেমা হল। কিন্তু প্রশ্ন হলো পাকিস্তানের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত কতটা বিশ্বাসযোগ্য? করোনাভাইরাস পরীক্ষার হার তুলনামূলকভাবে কম। পরীক্ষার সংখ্যাও কমে আসছে। সরকারি হিসেব অনুযায়ী পাকিস্তানের মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দুই লক্ষ ৯০ হাজার বলা হলেও প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে বেশি, তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। কিন্তু সংক্রমণের হার কমে যাওয়ার পেছনে পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা কমে যাওয়ার প্রমাণ রয়েছে। হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও কমেছে। পাকিস্তানের দুটি প্রধান শহর করাচি এবং লাহোর থেকে বিবিসি যে উপাত্ত সংগ্রহ করেছে তা পর্যালোচনা করে জানা যাচ্ছে, জুন মাসে শহর দুটির কবরস্থানে দাফনের সংখ্যা বেড়ে গেলেও এর পেছনে শুধু করোনাভাইরাস দায়ী একথা বলা যায় না। যেমন, লাহোরের সবচেয়ে বড় গোরস্থান মিয়ানি সাহিবে ২০২০ জালের জুন মাসে ১,১৭৬ জনকে কবর দেয়া হয়েছে। তার আগের বছর জুন মাসে এই সংখ্যা ছিল ৬৯৬। এর মধ্যে জুন মাসে যাদের কবর হয়েছে তাদের মধ্যে ৪৮ জনকে করোনাভাইরাসে রোগী হিসেবে সরকারি নথিতে চিহ্নিত করা হয়েছে। সংখ্যাটি বেড়ে যাওয়ার পেছনে কারণে হিসেবে করোনাভাইরাস ধরা পড়েনি এমন রোগী, অন্যান্য রোগে ভুগে প্রাণত্যাগ করেছেন এমন রোগীও রয়েছেন। এদের অনেকেই চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে জায়গা পাননি। পাকিস্তানে ৬৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সীদের হার ৪%-এরও কম। আরও পড়তে পারেন: বাংলাদেশের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক চায় পাকিস্তান, বলছেন ইমরান খান হাসিনা-ইমরান ফোনালাপ: কেন ঢাকা নিয়ে ইসলামাবাদ এখন এত আগ্রহী মহামারি জর্জরিত পাকিস্তান ক্রিকেট দল, কী হবে ইংল্যান্ড যাত্রার? একইভাবে করাচিতে ২০২০ সালের জুন মাসে তার আগের দু'বছরের তুলনায় অনেক বেশি সংখ্যক লোককে দাফন করা হয়েছে। তবে দুটি শহরে দাফনের সংখ্যা এখন স্বাভাবিক অংকে নেমে আসছে। তবে এই 'অতিরিক্ত সংখ্যক মৃত্যু'র জন্য করোনাভাইরাসকে যদি দায়ী করা হয়ও, তবুও আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী পাকিস্তানে মৃত্যুর হার তুলনামুলকভাবে কম। তবে এটা খুব কম তাও বলা যাবে না। পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ ড. রানা জাওয়াদ আসগরের মতে, এর পেছনে প্রধান কারণে হচ্ছে পাকিস্তানের তরুণ জনগোষ্ঠী। পাকিস্তানের জনসংখ্যার গড় বয়স হচ্ছে ২২ বছর। ব্রিটেনের যেখানে ৪১ বছর। বিশ্বে করোনাভাইরাসে যত মানুষের মৃত্যু হয়েছে তাদের অধিকাংশই বয়স্ক রোগী। ড. আসগর বিবিসিকে জানিয়েছেন, পাকিস্তানে ৬৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের নাগরিকরা মোট জনসংখ্যার মাত্র ৪%। উন্নত দেশগুলোতে এই সংখ্যা ২০%-২৫%। একারণেই পাকিস্তানে বেশি মৃত্যু দেখা যায়নি, বলছেন তিনি। করাচিতে লকডাউন উঠে যাওয়ার পর মানুষজন ঘর থেকে বাইরে আসেন। আরেকটা বড় কারণ হলো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সামাজিক মেলামেশার পরিধি উন্নতে দেশগুলোর তুলনায় বেশ ছোট। "এই ভাইরাস যখন এসব ছোট বৃত্তগুলোর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তার বিস্তারের আর কোন জায়গা থাকে না।" উষ্ণ আবহাওয়া কিংবা আগে একবার করোনা হলে পরে আর হবে না বলে যেসব তত্ত্ব প্রচলিত আছে, এখন পর্যন্ত সেগুলো প্রমাণিত হয়নি। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সরকার যখন স্থানীয় পর্যায়ে লকডাউন শুরু করে তখন থেকেই করোনা ��োগীর সংখ্যা কমতে থাকে। তবে এসব এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এসব লকডাউন খুব একটা কঠোর ছিল না। লোকজন যে এটা খুব মেনে চরেছেন তাও বলা যায় না। লন্ডনের স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিনের রোগতত্ত্ববীদ ড. মিশাল খান বলছেন, পাকিস্তানের সমাজে এনিয়ে একটা 'বৃহত্তর সচেতনতা' তৈরি হয়েছিল। তবে তার চিত্রও ঠিক পরিষ্কার না। লাহোরে এক সিনেমা হলের বাইরে সামাজিক দূরত্ব মেনে দর্শকদের লাইন। জনমিতি কিংবা সামাজিক আচরণ দিয়ে পাকিস্তানে করোনার কম প্রকোপকে ব্যাখ্যা করা হলে হয়তো বলা যাবে পশ্চিমা দেশের তুলনায় পাকিস্তানের অবস্থা ভাল। কিন্তু সেই অবস্থার সাথে সীমান্তের ওপারে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সাথে কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রতি ১০ লক্ষ মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর হার পাকিস্তানেও যা ভারতেও তাই। কিন্তু ভারতের হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ অনেক বেশি। সেখানে সংক্রমণের হারও বেশি। এর পেছনে একটা থিওরি হচ্ছে, ভারতের শহরগুলোর আয়তন এবং জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক বেশি। ভারতের জনস্বাস্থ্য ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক কে. শ্রীনাথ রেড্ডি বলছেন, মুম্বাই বা দিল্লির মতো শহরে সংক্রমণের হার ইদানীং কমে এলেও এই ভাইরাস এখন দেশের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ছে। তবে পাকিস্তানেও করোনার দ্বিতীয় প্রকোপ শুরু হওয়ার হুমকি রয়েছে। গত জুলাই মাসে করাচিতে ওষুধ কোম্পানি গেটজ্ ফার্মা একটি সমীক্ষা চালায়। এতে দেখা যায়, করাচির মোট বাসিন্দাদের ১৭.৫% করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মানে হলো করোনার প্রকোপ ভবিষ্যতে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে পারে। করোনার বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার পর বিশাল সংখ্যক মানুষ শহর ছেড়ে গ্রাম ছলে গিয়েছেন। ফলে এই ভাইরাস গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। সমস্যা হলো এসব জায়গায় স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা আরও দুর্বল। ড. আসগর বলছেন, করোনাভাইরাসের নতুন 'স্পাইক' বা প্রাদুর্ভাব মোকাবেলা করতে হলে নজরদারির ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, "এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের অবস্থা ভাল, তার মানে এই নয় যে বিপদ কেটে গেছে।" করোনাভাইরাস: সুস্থ হয়ে উঠতে কতদিন লাগে? নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে করোনাভাইরাস : কীভাবে বানাবেন আপনার নিজের ফেসমাস্ক আপনার কি দ্বিতীয়বার কোভিড ১৯ সংক্রমণ হতে পারে? টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে ���ি? 'হার্ড ইমিউনিটি' কী, এর জন্য কতটা মূল্য দিতে হবে? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, বিশাল জনসংখ্যা এবং ঘন বসতিপূর্ণ দরিদ্র এলাকা - করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর থেকেই আশঙ্কা করা হচ্ছিল পাকিস্তান বিপদে পড়তে যাচ্ছে। +text: বাংলাদেশে দশ বছরের নিচে কোন শিশুর প্রথম মৃত্যু এটি। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট আইইডিসিআর এর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বিবিসিকে বলেন, "বাংলাদেশে রোববার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া মানুষের সর্বনিম্ন বয়স ছিল ৩২ বছর। ফলে এটি বাংলাদেশে দশ বছরের নিচে প্রথম মৃত্যু বলা যায়।" আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার নাথ বিবিসিকে বলেন, রাতে শিশুটিকে টার্মিনাল স্টেজ অর্থাৎ মারা যাবার আগ মূহুর্তে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তির কুড়ি মিনিটের মধ্যেই শিশুটি মারা যায়। শিশুটির বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়াতে। গত কয়েকদিন ধরেই সে জ্বর, কাশি এবং শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরিতে অগ্রগতি কতদূর? টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি কোথায়, কেন এতো প্রাণঘাতী এক পর্যায়ে চিকিৎসকের পরামর্শে তার করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হলে, রোববার সন্ধ্যায় রিপোর্ট পাওয়া যায় যে, শিশুটি কোভিড-১৯ পজিটিভ। তখনো শিশুটি কোন হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়নি। ডা. নাথ বলেছেন, রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে শিশুটিকে পটিয়া থেকে আন্দরকিল্লায় ঐ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তিনি জানিয়েছেন, শিশুটি শারীরিক প্রতিবন্ধী ছিল। তবে তার অন্যকোন রোগের ইতিহাস ছিল কিনা সে সম্পর্কে বলতে পারেননি ডা. নাথ। তিনি জানিয়েছেন, শিশুটি কীভাবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, সে সম্পর্কে হাসপাতালে কোন তথ্য নেই। চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মোট মানুষের সংখ্যা ১৪ জন। চট্টগ্রামে যে কয়েকটি জায়গায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত মানুষের চিকিৎসা করা হয় আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতাল তার অন্যতম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে করোনাভাইরাসে শিশুরা তুলনামূলকভাবে কম আক্রান্ত হয় বলে সংস্থাটি দেখতে পেয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে বিশ্বে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ছিল দশমিক সাত শতাংশের মত। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম শিশুর মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রামের পটিয়ায়। সোমবার রাত আড়াইটায় চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালে ছয় বছর বয়সী শিশুটি মারা যায়। +text: বাংলাদেশে ব্রি-২৯ জাতের ধানের সঙ্গে ভুট্টার বীজ মিশিয়ে গোল্ডেন রাইস উদ্ভাবন করা হয়েছে তবে গোল্ডেন রাইস নিয়ে কাজ করেন এমন ব্যক্তিরা বলছেন, এটি নতুন ধরনের একটি ফসল যা দরিদ্র মানুষের শরীরে ভিটামিন এ-র অভাব মেটাতে সহায়তা করবে। বর্তমানে গোল্ডেন রাইস নামের ধানটি পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করার জন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে। গোল্ডেন রাইস কী? সাধারণত চালের রঙ সাদা হলেও এই চালের রঙ হয়ে থাকে হলদে সোনালি। এটি আসলে জেনেটিক্যালি মডিফাইড একটা শস্য। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিআর-২৯ জাতের ধানের সঙ্গে ভুট্টার জিন মিলিয়ে এই গোল্ডেন রাইসের জাতটি উদ্ভাবন করা হয়েছে। এর সাথে জড়িত রয়েছে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট এবং মার্কিন দাতব্য সংস্থা বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। ভুট্টা অথবা ড্যাফোডিল ফুল থেকে নেয়া 'ফাইটোন সিনথেজ' জিন এবং মাটির এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া থেকে নেয়া 'ক্যারোটিন ডিস্যাচুরেজ' জিন ধানের জিনোমে প্রবেশ করিয়ে এই গোল্ডেন রাইস প্রস্তুত করা হয়। এর ফলে ধানের ভেতর ভিটামিন এ (বিটা ক্যারোটিন, যা ভিটামিন এ-র পূর্বের অবস্থা) তৈরি হয়। গোল্ডেন রাইস প্রবর্তনের জন্য ব্রি-২৯ জাতের ধানকে জেনেটিক্যালি মডিফাইড করার জন্য বহুজাতিক সিনজেনটা কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশের ব্রির একটি চুক্তি হয়। এর ফলে সিনজেনটা ব্রি-২৯ জাতের ধানে ওই দুটি জিন সংযোজন করে বাজারজাত করবে। আরো পড়ুন: বাংলাদেশে নতুন দুটি ধানের জাত উদ্ভাবন জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে লবণাক্ততা 'চারা গাছের আকৃতি বড় করার নতুন উপায় উদ্ভাবন' সাধারণ সাদা চালের তুলনায় এ জাতীয় চাল সোনালি রঙের হয়ে থাকে এর ফলে কি লাভ হবে? বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস বিবিসিকে বলছেন, বাংলাদেশের অনেক মানুষ, বিশেষ করে গর্ভবতী নারী ও শিশুদের মধ্যে ভিটামিন এ এর অভাব দেখা যায়। সরকারি ক্যাম্পেইনেও তাদের কাছে ভিটামিন এ পৌঁছানো যাচ্ছে না, আবার এই ভিটামিন পাবা�� জন্য দরকারি খাবারও তারা খাচ্ছেন না। ''কিন্তু যেহেতু বাংলাদেশে, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলোয় ভাত প্রধান খাদ্য, তাই ভাতের সঙ্গে এই ভিটামিনটি মিশিয়ে দেয়া গেলে তাদের শরীরে ভিটামিন এ পৌঁছানো সম্ভব হবে। ফলে রাতকানা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার মতো সমস্যা ঠেকানো যাবে।'' তিনি বলছেন, এখনো এই ধানটি পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। বাংলাদেশে সরকারি অনুমোদন পাওয়ার পর মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষা শুরু হবে। পরিবেশ কর্মীদের উদ্বেগ তবে এই গোল্ডেন রাইস নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের পরিবেশ কর্মীরা। উবিনীগ নামের একটি সংস্থার প্রধান ফরিদা আক্তার বলছেন, ''এ ধরনের জিএম খাবার চালু করার মতো পরিবেশ এখনো বাংলাদেশে তৈরি হয়নি। কারণ এ ধরনের একটি ফসল চালু করতে হলে পরিবেশের ওপর, অন্যান্য ফসলের ওপর যে প্রভাব পড়বে, তা যাচাই করে দেখা হয়নি। এ ধরনের ফসল চালুর আগে বায়োসেফটির বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।'' তিনি বলছেন, জেনেটিক্যালি মডিফাইড ফসলে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত অনেক ঝুঁকি থাকে। কিন্তু সেগুলো নিয়ে গবেষণা করা হয়নি। আর বাংলাদেশের মতো দেশে এরকম ফসলের দরকারও নেই। কারণ অনেক খাবারে ভিটামিন এ পাওয়া যায়, বরং সেসব খাবার খেতে উৎসাহ তৈরি করতে হবে।'' তারা দাবি করছেন, পাঁচ বছর আগে বিটি বেগুন নামের যে জিএম ফসলটি চালু করা হয়েছিল, একটি নিরপেক্ষ সংস্থার মাধ্যমে সেটির ভালোমন্দ আগে যাচাই করে, নতুন করে কোন জিএম ফসলের অনুমতি দেয়া না দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাদের আশঙ্কা, এর ফলে বীজের নিয়ন্ত্রণ চাষিদের কাছ থেকে বহুজাতিক কোম্পানির কাছে চলে যেতে পারে। যদিও বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন, এই ধান থেকে কৃষকরা নিজেরাই বীজ তৈরি করতে পারবেন। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: বিমানে যা ঘটলো তার কী মূল্য দেবে বাংলাদেশ? বিমান ছিনতাই চেষ্টাকারী ব্যক্তির সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে বিশ্বব্যাপী বিমান ছিনতাইয়ের যত দুর্ধর্ষ ঘটনা 'এডিসি বললো,স্যার মেশিনগানে গুলি লাগানো আছে' বাংলাদেশ, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশে ভিটামিন এ-র অভাব দূর করতে চালের সঙ্গে ভিটামিন এ মিশিয়ে দেয়ার এই উদ্যোগ জিএম খাবার কি ক্ষতিকর? এ নিয়ে এখনো বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। উবিনীগের মতো সংস্থা যেখানে এই ধরনের জিন পরিবর্তন করা ফসলের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন, সেখানে ব্রি'র সাবেক প্রধান মি. বিশ্বাস বলছেন, এতে উদ্বেগের কিছু নেই। তিনি বলছেন, নব্বুই দশকের শেষ থেকে সয়াবিন, টমাটো, গমসহ অনেক জিএম উদ্ভিদ অনেকদিন ধরেই পশ্চিমা দেশগুলোয় চাষাবাদ হচ্ছে, এখনো এসব ফসলের ক্ষতিকর কিছু পাওয়া যায়নি। সেখানে কোথাও পরিবেশ বা স্বাস্থ্যের ওপর বিষাক্ততা বা অ্যালার্জির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আর ধান যেহেতু স্বপরাগী ফসল, তাই এটি থেকে অন্য কোথায় কিছু ছড়িয়ে যাবার সম্ভাবনাও নগণ্য। তবে উবিনীগের প্রধান ফরিদা আক্তার বলছেন, অনেক দেশে জিএম ফসলের ক্ষতিকর প্রভাব দেখা গেছে। যেহেতু ক্ষতি একবার হয়ে গেলে সেটা ফিরিয়ে আনা যাবে না, তাই ফসল মাঠ পর্যায়ে অনুমতি দেয়ার আগে বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখতে হবে। তার অভিযোগ, এ ধরনের ফসলের ক্ষেত্রে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের যেভাবে পরীক্ষা করে দেখা উচিত, সেটা করা হচ্ছে না। কর্মকর্তারা বলছেন, গোল্ডেন রাইসের পরিবেশগত নিরাপত্তা যাচাইয়ের জন্য কিছু পরীক্ষা চালানো হবে এবং সেই প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করবে যে এই ফসলটি ভোক্তা পর্যায়ে সরবরাহ করা হবে কিনা। বাংলাদেশের কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা উদ্বেগ জানিয়ে বলছে, 'গোল্ডেন রাইস' নামের যে নতুন জাতের জেনেটিক্যালি মডিফাইড ধান চাষাবাদের জন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি চাওয়া হয়েছে, সেই অনুমতি যেন দেয়া না হয়। তাদের বক্তব্য, এই ফসল বাংলাদেশের পরিবেশ ও মানুষের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। +text: চলুন দেখে নিই গেল সপ্তাহে দেশে এবং দেশের বাইরে খেলা নিয়ে কোন কোন বিষয়গুলো সোশাল মিডিয়ায় সাড়া ফেলেছে। শুক্রবার রাতে ঢাকার একটি হোটেলে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা বঙ্গবন্ধু টি টোয়েন্টি কাপের একটি উদযাপন অনুষ্ঠান করেন সপ্তাহের শুরুতেই আলোচনায় ছিলেন সাকিব আল হাসান, মাশরাফী বিন মোর্ত্তজারা। শুক্রবার রাতে ঢাকার একটি হোটেলে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা বঙ্গবন্ধু টি টোয়েন্টি কাপের একটি উদযাপন অনুষ্ঠান করেন। যেখানে এই টুর্নামেন্টে খেলা প্রায় সবাই উপস্থিত ছিলেন, সাথে ছিলেন কোচ-ম্যানেজাররাও। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এই টুর্নামেন্টে কোভিড সতর্কতার অংশ হিসেবে খেলা শুরুর আগেই একটি বায়োবাবল তৈরি করেছে। এই বায়োবাবলের মধ্যেই ক্রিকেটাররা ছিলেন, তাই ক্রিকেটারদের পার্টি নিয়ে তেমন প্রশ্ন ওঠেনি। তবে পরেরদিন তামিম ইকবালের একটি স্ট্যাটাসের পর দুশ্চিন্তা শুরু হয়। বাংলাদেশের ওয়ানডে ফরম্যাটের এই অধিনায়ক লেখেন, "গতকাল থেকেই আমার শরীর একটু খারাপ ছিল। আজকে ব্যাটিং করে ড্রেসিং রুমে ফেরার পর শরীর আরও বেশি খারাপ করে। প্রচণ্ড দুর্বল অনুভব করছিলাম।" সাথে সব ধরনের পরীক্ষা হওয়ার কথাও যোগ করেন তিনি। ঠিক পরের দিন রাতেই ঘোষণা আসে তামিম ইকবালের কোভিড পরীক্ষা হয়েছে এবং তার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। এতে করে টুর্নামেন্টেও কোনো বাধা আসেনি। বঙ্গবন্ধু টি টোয়েন্টি কাপে খেলার চেয়েও বেশি আলোচনা হয়েছে মূলত ঢাকা ও বরিশালের মধ্যে একটি ম্যাচে সতীর্থের সাথে মুশফিকুর রহিম সতীর্থের দিকে দুবার মারমুখী ভঙ্গি নিয়ে। যেখানে সতীর্থের সাথে মারমুখী আচরণের কারণে মুশফিকুর রহিমকে শাস্তি দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। ম্যাচ ফির ২৫ শতাংশ জরিমানা করা হয় মুশফিকুর রহিমকে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মুশফিক খেলার মধ্যে নিজ দলের খেলোয়াড়ের প্রতি অসম্মানজনক আচরণ করেছে বলে দেখা গেছে। মুশফিকুর রহিম ঘটনার পর 'ক্ষমা চেয়ে' একটি বিবৃতি দিয়েছেন ফেসবুকে। নাসুম আহমেদও একটি পোস্ট করেছেন যেখানে তিনি এই ঘটনাকে 'খেলার অংশ' বলেছেন। সতীর্থের সাথে মারমুখী আচরণের পর ক্ষমা চাইলেন মুশফিকুর রহিম গৌতম গাম্ভীরের পোস্ট নিয়ে বিতর্ক বিজয় দিবস নিয়ে গৌতম গাম্ভীরের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে বিতর্ক ১৬ই ডিসেম্বরে ভারতীয় ক্রিকেটার গৌতম গাম্ভীরের একটি পোস্ট নিয়ে বাংলাদেশে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। 'ভিজায় দিবস', যা বাংলায় 'বিজয় দিবস' উপলক্ষে তৎকালীন ভারতীয় জেনারেল স্যাম মানেকশ'র একটি কথা উল্লেখ করে ভারতীয় বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধা জানান গাম্ভীর। তার এই স্ট্যাটাসকে ভালভাবে নেননি অনেক বাংলাদেশি। বাংলাদেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কেউ কেউ বলছেন, বাংলাদেশের বিজয় দিবসে বাংলাদেশের নামও উল্লেখ করেননি কেনো। অনেকে লিখেছেন, এই কৃতিত্ব বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের এবং ভারতের মিত্র বাহিনীর। মেসি-নেইমারের ছবি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনায় এসেছে নেইমারের একটি পোস্ট। যেখানে তিনি লিওনেল মেসির সাথে একটি ছবি পোস্ট করেছেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বে লিওনেল মেসির বার্সেলোনার সাথে নেইমারের প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের একটি ম্যাচ পড়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বে লিওনেল মেসির বার্সেলোনার সাথে নেইমারের প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের একটি ম্যাচ পড়েছে। এছাড়া ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এবং লিওনেল মেসি ফ্রান্স ফুটবল সাময়ীকির প্রকাশিত স্বপ্নের একাদশে জায়গা পাওয়ায় নিজেদের আনন্দ প্রকাশ করেছেন নিজ নিজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এই একাদশকে বলা হচ্ছে 'অল টাইম ব্যালন ডি' অর একাদশ'। ফুটবল সাময়ীকির প্রকাশিত স্বপ্নের একাদশে জায়গা পাওয়ায় নিজেদের আনন্দ প্রকাশ করেছেন নিজ নিজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরো পড়ুন: সাকিব 'বিচ মুডে', সাচিন উড়ছেন, বলিউডি সাজে ডেভিড ওয়ার্নার 'জাতীয় গোঁফ' নিয়ে মস্করা ভারতের সামাজিক মাধ্যমে ফেসবুকে মানুষের যে ৫টি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায় বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে সপ্তাহের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল খেলার মাঠে মুশফিকুর রহিমের মারমুখী ভঙ্গি এবং জরিমানা। পাশাপাশি ঢাকার একটি হোটেলে ক্রিকেটারদের একটি বারবিকিউ পার্টির পর কোভিড সংক্রমণের একটি ভীতিও তৈরি হয়েছিল। +text: পৃথুলা রশীদ প্রথম আন্তর্জাতিক ফ্লাইটটিও ছিল কাঠমান্ডুতেই। তার তরুণ জীবন সম্পর্কে বিবিসি বাংলার সাথে কথা বলছিলেন তার খালাতো বোন তাসমিন রহমান অমি। তিনি বলছিলেন, পৃথুলার পাইলট হওয়া পরিবারের অনেকেই পছন্দ করেনি। জীবনের শঙ্কা রয়েছে এমন একটা পেশায় যে তিনি যোগ দেবেন এটা অনেকেই মেনে নিতে পারেনি। "ও জয়েন করার পর থেকেই আমরা এই ঝুঁকির বিষয়টা জানতাম। কিন্তু বেসিক্যালি, ও নিজে এই পেশায় যেতে চেয়েছিল," বলছিলেন মিস রহমান। পৃথুলার মন ছিল খুবই অনুসন্ধিৎসু । নানা জিনিস সম্পর্কে তিনি জানতে চাইতেন। ছেলে বেলায় তিনি একবার নিজের ওপর পরীক্ষা করে দেখতে গিয়েছিলেন যে মারা গেলে কেমন লাগে। আরো দেখুন: কী করে ফাঁস হলো এটিসি আর পাইলটের কথোপকথন? স্টিভেন হকিং: রসিক এবং খেয়ালী এক বিজ্ঞানী পোষা প্রাণীদের প্রতি তার ছিল মায়া। তার বাবা সে সময় বাসায় ছিলেন। তিনিই মেয়েকে বিপদের হাত থেকে বাঁচান। 'চড়ুইপাখি মরে গেলে ক'দিন খায়নি পৃথুলা' তাসমিন রহমান অমি বলছিলেন, পৃথুলা রশীদ ছিলেন খুবই কোমল প্রাণের মানুষ। বাসায় খরগোশ, মাছ পুষতেন। তিনি বলেন, রাস্তার কুকুরদের জন্য তার ছিল অসীম মায়া। একবার একটি কুকুরের শ্বাসকষ্ট দেখে বাবার ইনহেলার দিয়ে চিকিৎসা করেন। একবার এক চড়ুই পাখি ডানা ভেঙে বাসায় এসে পড়েছিল। অনেক যত্ন নিয়ে তিনি সেই পাখির শুশ্রূষা করেন। কিন্তু পাখিটি শেষ পর্যন্ত বাঁচেনি। এই শোকে পৃথুলা দুই-তিন দিন ভাল করে খাওয়া দাওয়া করতে পারেননি কলে তিনি জানিয়েছেন। "সে ছিল এমন এক মানুষ যার উপস্থিতি আপনার মনে ভাল করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট," বলছিলেন তিনি," আপনার মন খুব খারাপ, কিন্তু ও এমন একটা কিছু করবে, বা এমন একটা কিছু বলবে, যাতে আপনার একদম মন ভাল হয়ে যাবে।" কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গত সোমবারই নিশ্চিত করে যে নিহতদের মধ্যে ইউএস-বাংলার ঐ ফ্লাইটের পাইলট পৃথুলা রশীদও রয়েছেন। আরো পড়ুন: নেপালে ট্যুর বাতিল করছে আতঙ্কিত যাত্রীরা বেসরকারি বিমান খাতকে কতটা প্রভাবিত করবে? কীভাবে করা হয় বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত? এটি ছিল কো-পাইলট হিসেবে পৃথুলা রশীদের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। +text: ঢাকার অনেক রাস্তায় বাসা ভাড়ার বিজ্ঞাপন এভাবে দেয়া থাকে। বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, তিনি বাড়ির মালিকের স্ত্রী হোসনে আরার সাথে কথা বলেছেন। হোসনে আরা পুলিশকে জানিয়েছে, গত ১০/১২ দিন আগে তিনজন বোরকা পরিহিত নারী আসেন বাসা ভাড়া নেয়ার জন্য। সেই সময় তারা এক কামরার একটা বাসার জন্য এক হাজার টাকা অগ্রিমও দিয়ে যায়। গত শনিবার তারা ঐ বাসায় আসে থাকার জন্য। পরের দিন রবিবার সকালে বাড়িওয়ালার কক্ষে যেয়ে তাদের খোঁজখবর নিতে থাকে। হোসনে আরা জানিয়েছেন, শুরু থেকেই তারা অনেক আন্তরিক ছিল। রবিবার সকালে তারা সকালের নাস্তা খাওয়ারও প্রস্তাব করে। এক পর্যায়ে হোসনে আরা এবং তার স্বামী বেলায়েত হোসেনকে ঐ তিনজন রুটি এবং হালুয়া খেতে দেন। এরপরেই তারা অসুস্থবোধ করেন এবং অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পুলিশ বলছে, এরপর ঐ বাসা থেকে এক ভরির বেশি স্বর্ণালংকার এবং প্রায় ৫৫ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় তিন নারী। উল্লেখ্য, একতলা টিনশেডের এই বাড়িতে বাড়িওয়ালা দম্পতি ছাড়াও, তাদের পুত্রবধূ থাকতেন। তাদের ছেলে থাকেন ইতালি। আর একটা রুম খালি ছিল। সেই রুমই ভাড়া দিয়েছিলেন তারা। পুত্রবধূ তার ছেলেকে স্কুল থেকে বাসায় ফিরে দেখেন তার শশুর-শাশুড়ি অজ্ঞান হয়ে পরে আছে। এবং বাসার জিনিসপত্র খোয়া গেছে। এরপর তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, এর আগে এ বছরের অগাস্টে ঢাকার ডেমরায় ঠিক একই ভাবে খাবার খাইয়ে ভাড়াটিয়া সেজে কয়েকজন নারী বাড়িওয়ালা দম্পতিকে অজ্ঞান করে এবং বাসার জিনিস লুট করে নিয়ে যায়। তবে ঐ দম্পতিকে হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে তারা মারা যান। পুলিশ বলছে, এই ধরনের ঘটনা নতুন, এর জন্য বাড়িওয়ালাদের সর্তক থাকতে হবে। ওসি রফিকুল ইসলাম বলেছেন, এই দুটি ঘটনায় দেখা গেছে তারা ভাড়াটিয়াদের কোন পরিচয় পত্র, ন্যাশনাল আইডি কার্ড বা কোন প্রকার কাগজপত্র রাখেনি। ডেমরার ঘটনা এখন ডিবি পুলিশ তদন্ত করছে। আর বাড্ডা থানার ওসি জানিয়েছেন, বাড্ডার বাড়িওয়ালারা অসুস্থ এবং তারা এখনও হাসপাতালে। তাই এখনও কোন মামলা হয় নি। তবে পুলিশ এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে। বাংলাদেশের ঢাকার বাড্ডায় ভাড়াটিয়া সেজে তিন নারী বাড়িওয়ালা দম্পতিকে অজ্ঞান করে। এরপর সেই বাসা থেকে স্বর্ণালংকার,টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। +text: ভারতের একটি জনপ্রিয় বাংলা টিভি সিরিয়ালের বিজ্ঞাপন এর ফলে বাংলাদেশে এ তিনটি ভারতীয় স্যাটেলাইট চ্যানেল প্রদর্শনে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। বাংলাদেশে বেশ কিছুদিন যাবত বিনোদন জগতের অনেকেই ভারতীয় কিছু চ্যানেল বন্ধ করার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। কিন্তু নানা সময় জরিপে এ কথাও সামনে এসেছে যে ভারতীয় টেলিভিশনের চ্যানেলগুলোর বিশাল সংখ্যায় দর্শক রয়েছে বাংলাদেশে। কিন্তু কেন বাংলাদেশি চ্যানেলগুলো ভারতের এই বাংলা চ্যানেলগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পেরে উঠছে না? যে তিনটি ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল নিয়ে প্রশ্ন সেই স্টার প্লাস, স্টার জলসা এবং জি বাংলা -বাংলাদেশি দর্শকদের একটি বড় অংশের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়। বিশেষ করে নারীদের মধ্যে তো বটেই। বছর খানেক আগে করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের এক জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে নারীদের ৯০ শতাংশ টেলিভিশন দেখেন, কিন্তু এদের ৬০ শতাংশই দেখেন স্টার জলসা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন ও ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক টেলিভিশন ও ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক শফিউল আলম ভুঁইয়া মনে করেন এর পেছনে একাধিক কারণ আছে। তিনি বলছেন, "বাংলাদেশে চ্যানেলগুলোতে বিজ্ঞাপনের আধিক্য একটি কারণ। পরিমাণের দিক থেকে ভারতের চ্যানেলে বিজ্ঞাপন কম। আরেকটি কারণ হচ্ছে অবশ্যই অনুষ্ঠানের মান।" "কোনও কোনও ক্ষেত্রে ভারতীয় অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা, সেগুলোর বিষয়বস্তু, বিশেষ করে অভিনয়ের মান উন্নততর। আমাদের অনেক অভিনেতা অভিনেত্রীর অভিনয় খ��ব ভাল হলেও আমাদের চ্যানেলের সংখ্যাও অনেক - তাই আমাদের কোয়ালিটির একটা অভাব পরিলক্ষিত হয়", বলছিলেন মি ভুঁইঞা। যেখানে মান নিয়ে প্রশ্ন সেখানে জনপ্রিয়তার লড়াইয়ে কীভাবে লড়ছে বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলো? জবাবে মাছরাঙা টেলিভিশনের প্রোগ্রাম ম্যানেজার আরিফুর রহমান কিছুটা হতাশারই চিত্র দিলেন। বিদেশি টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন বন্ধের দাবিতে সম্প্রতি ঢাকাতে বিক্ষোভও হয়েছে তিনি বলছেন, "এই দেশে যে সব নির্মাতা বা লেখক আছেন, যারা এই শিল্পের সাথে জড়িত তারা অনেক মেধাবী। কিন্তু সেই মেধা প্রকাশ করার জন্য যে পরিমাণ সুবিধা দরকার, যে পরিমাণ অর্থ দরকার বা কাঠামোগত সুবিধা দরকার সেই বিষয়গুলো আসলে আমরা করে উঠতে পারি না। আমাদের সীমাবদ্ধতা হচ্ছে পুরো সিস্টেমটাতে আমরা গভীর মনোযোগ দিচ্ছি না।" এই সীমাবদ্ধতার জায়গায় কীভাবে আটকে যাচ্ছেন নির্মাতারা, তার একটি ধারণা দিয়ে তিনি বলছিলেন, "আপনি যদি ভারতীয় কোন প্রোডাকশন দেখেন সেটার মধ্যে পরিচ্ছন্ন একটা বিষয় পাবেন। ধরেন ভারতে যেকোনো একটা প্রোডাকশনের জন্য একজন আর্ট ডিরেক্টর থাকে। একজন নির্মাতা শুধু প্রোডাকশন নিয়েই ভাবতে পারেন।" "কিন্তু বাংলাদেশে একজন নির্মাতাকে প্রোডাকশনের সব কাজ করতে হয়। এমনকি আর্টিস্ট কল করা, গাড়ি ঠিক করা, আর্টিস্ট খাবার খেলো কিনা তাও দেখতে হয়। এতে তার মনঃসংযোগে ব্যাঘাত ঘটে।" ভারতে তো বাংলাদেশি চ্যানেল দেখা যায় না - এই পাল্টা যুক্তি দিয়ে বাংলাদেশে সম্প্রতি অনেক নির্মাতা-পরিচালকই দাবি করে আসছেন বাংলাদেশেরও উচিত ভারতীয় চ্যানেলগুলোর প্রদর্শন বন্ধ করে দেওয়া। এই আন্দোলনকারীদের একজন পরিচালক গাজি রাকায়েৎ মনে করেন "বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোকে গুছিয়ে ওঠার জন্য একটু সময় দিতে হবে। আর সেজন্য পুরোপুরি না হলেও কিছু সময়ের জন্য হলেও ভারতীয় চ্যানেলগুলো বন্ধ রাখা দরকার। আর সেই কাজে সরকারই একমাত্র সহায়তা করতে পারে।" মানের বিষয়ে প্রশ্ন একেবারেই মানতে রাজি নন তিনি। বরং তিনি মনে করেন, "যদি আমাদের চ্যানেলগুলো ওদের ওখানে দেখানো যেত, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে , তাহলে আমার ধারণা যে পরিমাণ দর্শক পশ্চিমবঙ্গের চ্যানেল দেখছে সেই পরিমাণ দর্শক ওখানে বাংলাদেশের চ্যানেলও দেখতো।" কিন্তু তারপরও এটা ঘটনা, বাংলাদেশে টিভি খুললেই ভারতীয় চ্যানেল। তার কারণ কি খুব জমকালো সাজপোশাক নাকি ও��ানে অভিনেতা অভিনেত্রীরা বাংলাদেশের তুলনায় দেখতে বেশি গ্ল্যামারাস? মি রাকায়েত বলছেন, "এটা খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। আমাদের সংস্কৃতি তো পশ্চিমবঙ্গ থেকে একটু আলাদা। আমরা উদার না। অথচ ওরা কিন্তু পরকীয়া সম্পর্কের মতো অনেক খোলামেলা জিনিস দেখাতে পছন্দ করে। কাজেই দর্শক যা বাংলাদেশে দেখতে পারে না সেগুলো অন্য জায়গায় দেখার জন্য একটা ঝোঁক থাকতে পারে।" সেই ঝোঁক যে বিষয়গুলোতে, তাতে ক্ষতিকর কিছু আছে কিনা সেটি পর্যবেক্ষণ করতে বাংলাদেশ কেবল টেলিভিশন পরিচালনা আইন ২০০৬ অনুযায়ী একটি সেল গঠন করে সেটি পর্যবেক্ষণের ব্যাপারে এদিন মতামত দিয়েছে আদালত। বাংলাদেশে তিনটি ভারতীয় টিভি চ্যানেল স্টার প্লাস, স্টার জলসা ও জি বাংলা বন্ধ করতে যে রিট আবেদন করা হয়েছিল সেটি রবিবার খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। +text: তালিনে চালক-বিহীন বাস সরকারি সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান ইআরআর জানিয়েছে, অন্য কোনো যানবাহন বা পথচারীর সাথে কোনো দুর্ঘটনা হয়নি। তবে বেশ কবার শেষ মুহূর্তে দুর্ঘটনা এড়ানো গেছে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন সোমবার সাইরেন এবং ফ্লাশ লাইট সহ একটি পুলিশ কারকে সাইড দেয়নি একটি বাস। একজন ফটোগ্রাফার দেখেছেন, মানুষ পারাপারের জায়গায় লাল বাতি ভেঙ্গে চলে যায় একটি বাস। তখন পথচারীরা অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে ছিলেন। ইআরআর বলছে, যদিও চালক নেই, তবুও ট্রাফিক আইনের অনুসরণ নিশ্চিত করতে বাসে একজনকে থাকতেই হবে। বাসগুলোর দাম পড়েছে এক লাখ ইউরো। বেসরকারি খাত থেকে এই বিনিয়োগ এসেছে । আগামী ছয় মাসের জন্য এস্তোনিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের সভাপতি। এই গৌরব উদযাপনের জন্যই তালিনে চালক-বিহীন এই বাস চালু করা হয়েছে। ছয় মাস পরও এই বাস সার্ভিস চালু থাকবে কিনা তা জানা যায়নি। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: এস্তোনিয়ার রাজধানী তালিনে গত তিনদিন ধরে দুটো চালক-বিহীন বাস চলছে। +text: পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড খবর এসেছে পাকিস্তান থেকে, সেখানে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী ওয়াসিম খান বলেছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড পাকিস্তানের মাটিতে টেস্ট খেলতে খুব একটা ইচ্ছুক নয়, তারা তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলার প্রস্তাব দিয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের সফরসূচি অনুযায়ী ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে পাকিস্তানে তিনটি টি-টোয়েন্টি ও দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলতে যাওয়ার কথা ব���ংলাদেশ ক্রিকেট দলের। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী ওয়াসিম খান বলেন, কয়েক দফা আলোচনার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। ওয়াসিম খান বেশ দৃঢ়ভাবে বলেছেন, "বিসিবির কাছে আমি বেশ শক্তভাবে টেস্ট খেলতে না চাওয়ার কারণ জানতে চেয়েছি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনুমোদন করেছে।" শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট দল এখন দুই ম্যাচের একটি টেস্ট সিরিজ খেলতে পাকিস্তানেই অবস্থান করছে। যদিও ওয়ানডে সিরিজের সময় শ্রীলঙ্কার দশজন নিয়মিত জাতীয় দলে খেলা ক্রিকেটার নিরাপত্তা ইস্যুতে পাকিস্তানে যাননি। তবে টেস্ট খেলতে এখন মূল দলই পাকিস্তানে গিয়েছে। ক্রিকেট নিয়ে কিছু খবর: নিজের বয়স নিয়ে যা বললেন আফগান বোলার রশিদ খান আম্পায়ারদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগের নেপথ্যে ক্রিকেট বিনোদনের খোরাক মেটাতে ব্যর্থ বিপিএল? দিমুথ করুনারত্নে তাদেরই একজন যিনি ওয়ানডেতে নিজের নাম সরিয়ে নিলেও এখন টেস্ট খেলছেন। বুধবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পাকিস্তান এখন ক্রিকেট খেলার জন্য নিরাপদ। মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব বা এমসিসি কুমার সাঙ্গাকারার নেতৃত্বে লাহোরে একটি সফর করার কথা রয়েছে। এই সফরের মূল উদ্দেশ্য অন্য দেশগুলোকে পাকিস্তানে সফর করার ব্যাপারে নিশ্চয়তা দান করা। ধারণা করা হচ্ছে এই দলটি ফেব্রুয়ারিতে যাবে পাকিস্তানে। ওয়াসিম খান এখন ঘটনাকে উদাহরণ হিসেবে দেখান ও বলেন, "শ্রীলঙ্কার সাথে পাকিস্তানের দুটো টেস্ট শেষের দিকে, সব ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথাযথ ভাবে নেয়া হয়েছে। তো এখানে বাংলাদেশের আসতে না চাওয়ার কারণ দেখি না।" তিনি আরো বলেন, "আলোচনা শেষ হয়ে যায়নি, তারা টি-টোয়েন্টির কথা বলছে কিন্তু আমাদের জন্য অন্য দেশে টেস্ট খেলার অপশন হাতে নেই।" পুরো ঘটনায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কারো পক্ষ থেকে টি-টোয়েন্টি খেলতে রাজি হওয়া সম্পর্কিত কোনো কথা শোনা যায়নি এখনো। ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট দলের বাসে একটি হামলা হয়েছিল আকরাম খান বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ক্রিকেট অপারেশন্স বিভাগের প্রধান বলেন, "আমরা তো সরকারের হাতে সব ছেড়ে দিয়েছি, এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গ্রীন সিগনাল না পাওয়া পর্যন্ত আমরা কিছুই বলতে পারছিনা এবিষয়ে।" আজ ঢাকায় বাংলাদেশ সরকারের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল পাকিস্তান সফর ইস্যুতে কথা বলেন, তিনি বলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সরকারের কাছে পাকিস্তান সফর নিয়ে স্পষ্ট কিছুই জানায়নি। "ক্রিকেট বোর্ড যাবে কি যাবে এটাও আমাদের নিশ্চয়তা দিতে হবে আমাদের।" তিনি যোগ করেন "বিদেশে কোনো দল খেলতে গেলে সেখান থেকে চিঠি দিয়ে জানাতে হবে পাকিস্তান সরকার শুধু দেবে তা নয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এই নিশ্চয়তা আসতে হবে।" বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজামুদ্দিন চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয় কিন্তু তিনি টেলিফোন ধরেননি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড থেকে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার ব্যাপারে ইতিবাচক বার্তা পেয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। +text: ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বিশ্বসেরা হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে আগাচ্ছে চীন কিন্তু পণ্যের মান? 'মেড ইন চায়না'র সমস্যাটা সেখানেই। তাদের পণ্যের মান ভালো নয় বলেই বেশিরভাগ মানুষের ধারণা। চীনের আরেকটি ব্যর্থতা, তারা এখনো বিশ্ববাজারে নিজেদের ব্র্যান্ডগুলি প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি, যেভাবে পেরেছিল আরেক এশিয়ান জায়ান্ট জাপান। চীনা পণ্যের আরেকটি বদনাম হচ্ছে, তারা আসলে বাজারে চালু নামী-দামী ব্রান্ডগুলোর হুবহু নকল। তাদের কোন নিজস্বতা নেই। কিন্তু চীন এখন 'মেড ইন চায়না'র এই ভাবমূর্তি আমূল বদলে দিতে চায়। তারা একটা মহাপরিকল্পনা তৈরি করেছে। সেই পরিকল্পনার নাম, "মেড ইন চায়না:২০২৫।" উড়োজাহাজ থেকে হাইস্পীড রেল, সবকিছু এই মহাপরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত এই পরিকল্পনাটি নিয়ে কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালে। কী আছে এই পরিকল্পনায়? চীনের সবচেয়ে বড় শক্তি তার ম্যানুফাকচারিং খাত। সেই শক্তিকেই এখানে কাজে লাগাবে চীন। তবে এতদিন যেভাবে চলেছে সেভাবে নয়। একেবারেই ভিন্ন কৌশলে। চীন এতদিন যেভাবে যে ধরমবর পণ্য তৈরি করে এসেছে, সেখানে একটা আমূল বিপ্লব ঘটানো হবে। পরিকল্পনাটি তিন ধাপের। ২০২৫ সাল সেই পরিকল্পনার প্রথম ধাপ মাত্র। ২০২৫ সাল নাগাদ চীন যত পণ্য তৈরি করমপ, তার সবকিছুর মান তারা বাড়াতে চায়। শিল্প-কারখানার উৎপাদনে তারা প্রয়োগ করবে ডিজিটাল প্রযুক্তি। ম্যানুফ্যাকচারিং এ বিশ্বের এক নম্বর শক্তি হবে চীন এমন কিছু চীনা ব্র্যান্ড তারা তৈরি করতে চায়, যেগুলো কিনতে ঝাঁপিয়ে পড়বে বাকী বিশ্ব। পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপে ২০৩৫ সাল নাগাদ চীনা কোম্পানিগুলো বিশ্বের বাকী সব কোম্পানিকে প্রযুক্তিতে, পণ্য মানে এবং সুনামে ছাড়িয়ে যেতে চায়। এজন্যে তাদের নতুন উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দিতে হবে। অন্যান্য খবর: বাংলাদেশে নারী নির্যাতনের মিথ্যা মামলা কতটা হয়? কেনাকাটায় আর ক্যাশ কাউন্টারের প্রয়োজন নেই গুহায় আটকে পড়লে কী করতে হবে? আর ২০৪৯ সালে, আধুনিক চীন যখন তার প্রতিষ্ঠার একশো বছর উদযাপন করবে, তখন তারা ম্যানুফ্যাকচারিং এ বিশ্বের এক নম্বর শক্তি হয়ে উঠতে চায়। দশটি গুরুত্বপূর্ণ খাত: চীনের উচ্চাকাঙ্খী এই পরিকল্পনা দুশ্চিন্তায় ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্রকে এজন্যে চীন দশটি গুরুত্বপূর্ণ খাত চিহ্ণিত করেছে। এর মধ্যে আছে সেমিকন্ডাকটার চিপ থেকে শুরু করে উড়োজাহাজ, রোবটিক্স থেকে শুরু করে ইলেকট্রিক কার, হাইস্পীড রেলওয়ে থেকে ওশেন ইঞ্জিনীয়ারিং। এই মহাপরিকল্পনায় সরকার বিপুল সহায়তা দিচ্ছে সব সরকারি-বেসরকারি কোম্পানিকে। এই উচ্চাকাঙ্খী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে যা যা দরকার, তার সবই করছে তারা। আর্থিক প্রণোদনার পাশাপাশি গবেষণা এবং উদ্ভাবনেও (আরএন্ডডি) সাহায্য করা হচ্ছে। সামরিক বাহিনী এবং সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বেসরকারি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে বলা হচ্ছে। 'মেড ইন চায়না: ২০২৫' সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে চীনা কোম্পানি আর চীনা ব্র্যান্ড বিশ্ব বাজারে চীনা আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এটাই যুক্তরাষ্ট্রকে বিরাট দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। যে কোন দেশের যে কোন দোকানে ঢুকে দশটি পণ্য কিনুন। চোখ বন্ধ করেই বলে দেয়া যায় এসব পণ্যের অর্ধেকই হয়তো চীনে তৈরি। 'মেড ইন চায়না'র এই সাফল্যের পেছনের কাহিনী সবার জানা। এত সস্তায় আর কেউ এত জিনিস তৈরি করতে পারে না। +text: ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হাতে বেশ কিছু বিকল্প রয়েছে। তবে প্রত্যেকটিরই নিজস্ব কিছু অসুবিধাও রয়েছে। একটি হচ্ছে কূটনৈতিক পন্থা। জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, বাশার আসাদের সামরিক ক্ষমতার পেছনে রাশিয়া ও ইরানের ভুমিকাকে যুক্তরাষ্ট্র উপেক্ষা করতে পারে না। সুতরাং নিষেধাজ্ঞা আরোপের মতো কোন পদক্ষেপ যদি নেয়া হয় তাহলে শুরু সিরিয়া নয় রাশিয়া ও ইরানও এর আওতায় পড়তে পারে। তা ছাড়া জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের দলটি চেষ্টা করছে একটি আন্তর্জাতিক দল গঠনের - যারা রাসায়নিক ��স্ত্র আক্রমণের তদন্ত করবেন। তবে রাশিয়া এরকম কোন প্রস্তাব আটকে দেয়ার চেষ্টা করবে। এই প্যানেল কাউকে দোষী বলে চিহ্নিত করুক এটা তারা চায় না। রাশিয়া বলেছে, সামরিক বিশেষজ্ঞরা দুমায় বেসামরিক লোকদের ওপর কোন ক্লোরিন বা রাসায়নিক অস্ত্র হামলার প্রমাণ পান নি। সমস্যা হলো তদন্তকারীরা যদি সিরিয়ান শাসকদের রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রমাণ পেয়েও যান, তাহলেও নিরাপত্তা পরিষদ হয়তো কিছুই করতে পারবে না, তারা এতটাই বিভক্ত। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দ্বিতীয় বিকল্প হচ্ছে: সীমিত পর্যায়ের সামরিক আঘাত। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: সিরিয়া থেকে কেন সৈন্য ফেরাতে পারছে না যুক্তরাষ্ট্র? দুমায় রাসায়নিক আক্রমণে বহু লোক নিহত হবার খবর পাওয়া গেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, তিনি এ বিষয়ে সামরিক বাহিনীর সাথে কথা বলছেন। এখন থেকে ঠিক এক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার একটি বিমানঘাঁটিতে ক্রুজ মিসাইল হামলা চালিয়েছিল - যুক্তরাষ্ট্রের মতে যে ঘাঁটি থেকে রাসায়নিক আক্রমণ চালানোর জন্য সিরিয়ান যুদ্ধবিমানগুলো উড়েছিল। এটা ছিলে এক রকমের শক্তি প্রদর্শন, যার মূল বার্তা ছিল যে, এরকম হামলা বন্ধ করুন না হলে আরো বড় আক্রমণ চালানো হবে। কিন্তু এর পর ১২ মাস পেরিয়ে গেছে। এই বার্তা সিরিয়ার কানে পৌঁছেছে বলে মনে হচ্ছে না। তাহলে একই রকম আক্রমণ চালিয়ে এবারই বা কতটা কাজ হবে? এখানে আসছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তৃতীয় বিকল্প: বড় আকারের সামরিক হামলা। মার্কিন এরকম একটি বড় আকারের সামরিক আক্রমণের আদেশ দিলে তার লক্ষ্য হবে সিরিয়ার বিমানবাহিনীর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারে ক্ষমতা সম্পূর্ণ ধ্বংস বা খর্ব করা । তবে এর ঝুঁকি অনেক। কারণ সিরিয়ার মিত্র হচ্ছে রাশিয়া এবং এরকম কোন পদক্ষেপ বৃহত্তর সংঘাতের ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ফ্রান্স এবং ব্রিটেন - সিরিয়াকে কঠোর জবাব দেবার কথা বলেছে, কিন্তু তারা ঠিক কতদূর পর্যন্ত শক্তি প্রয়োগ সমর্থন করবে? তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হয়তো কে সাথে আছে বা নেই তা নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। তিনি একাধিকবার বলেছেন, তিনি একাই এগিয়ে যেতে তৈরি। সিরিয়ার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তর নীতি কি হবে - সেটাও একটা বিবেচনা বিষয়। কিছুদিন আগেই মি. ট্রাম্প বলেছেন, ইসলামিক স্টেট পরাজিত হবার পর সিরিয়া খুব শিগগীরই ��িরিয়া থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। কিন্তু রাসায়নিক অস্ত্র ইস্যুতে তাকে যদি আবার সিরিয়ার ঘটনাবলীতে জড়িয়ে পড়তে হয় - তাহলে তার নীতির ভারসাম্যই বা কিভাবে রক্ষিত হবে? প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন। এই সময়ের অনেকখানি এর মধ্যেই পেরিয়ে গেছে। আরো পড়তে পারেন: কেন বিভক্ত হয়ে পড়লো কোটা সংস্কারের আন্দোলন? ৮৫ হাজার বছর আগে সৌদি আরবে কারা থাকতো? ইন্টারনেটে কে আপনাকে অনুসরণ করছে? সিরিয়ার দুমায় কথিত রাসায়নিক অস্ত্র হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, বাশার আসাদকে এ জন্য কঠোর মূল্য দিতে হবে এবং তিনি কোন বিকল্পই বিবেচনার বাইরে রাখছেন না। কিন্তু কী কী করতে পারেন তিনি? +text: সৌরভ গাঙ্গুলি উডল্যান্ডস হাসপাতাল সূত্রে বলা হচ্ছে, তার মৃদু হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। বিবিসির কলকাতা সংবাদদাতা অমিতাভ ভট্টশালী জানাচ্ছেন, হাসপাতালে সৌরভ গাঙ্গুলির এনজিওগ্রাম করা হয়েছে। তার হার্টে ব্লক পাওয়া গেছে এবং এজন্য তাকে স্টেন্টিং করা হচ্ছে, অর্থাৎ তাঁর হার্টে রিং পরানো হচ্ছে। পরিবারের সূত্রে জানা গেছে যে, শনিবার বাড়িতেই ব্যায়াম করার সময়ে হঠাৎ 'ব্ল্যাক আউট' হয়ে যান ৪৭ বছর বয়সী মি. গাঙ্গুলি। শুক্রবার রাত থেকেই তিনি অসুস্থতার কথা জানিয়েছিলেন - পিঠে আর হাতে ব্যথা অনুভব করছিলেন। ব্ল্যাক আউট হয়ে যাওয়ার পরেই তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মি. গাঙ্গুলির অসুস্থতার খবর পেয়ে রাজ্য সরকারি হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরাও ওই বেসরকারি হাসপাতালে যাচ্ছেন বলে খবর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ - সবাই তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন। ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি ২০০৭ সালে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরে যান। আর পরের বছরই তিনি তার শেষ টেস্ট ম্যাচটি খেলেন। গত বছর তিনি শক্তিশালী ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড - বিসিসিআই'য়ের সভাপতি নির্বাচিত হন। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: বিজেপিকে মুচলেকা দিয়েই কি বোর্ড সভাপতি সৌরভ? ভারত থেকে ভ্যাকসিন কিনতে রবিবার অর্থছাড় করবে বাংলাদেশ দশ মাসে কী শিখলো শিক্ষার্থীরা? কবে খুলবে স্কুল? করোনাভাইরাস: কর্মহীনদের কাজের আওতায় আনা বড় চ্যালেঞ্জ চুক্তি লঙ্ঘন করে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধের পরিমাণ বা��়াতে চায় ইরান ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ও দেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক ক্যাপ্টেন সৌরভ গাঙ্গুলিকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। +text: কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবে ইরানে দুই সপ্তাহেরও কম সময়ে ৭৭ জন মারা গেছে। বিচার বিভাগীয় মুখপাত্র গোলামাহোসেইন এসমাইলি বলেন, কোভিড-১৯ আক্রান্ত নয়, এটা নিশ্চিত হওয়ার পরই এদের মুক্তি দেয়া হয়। তবে পাঁচ বছরের বেশি দণ্ডপ্রাপ্তদের এই সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। একজন ব্রিটিশ এমপির দেয়া তথ্যমতে, ইরানে কারাবন্দী ব্রিটিশ-ইরানিয়ান দাতব্য কর্মী নাজানিন জাঘারি-র‍্যাটক্লিফ সম্ভবত শীঘ্রই মুক্তি পেতে যাচ্ছেন। যুক্তরাজ্যে ইরানের রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে এমপি টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, 'আজ অথবা কালকের মধ্যে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে'। মিজ জাঘারি-র‍্যাটক্লিফের স্বামী শনিবার বলেন, তেহরানের এভিন কারাগারে বন্দী থাকা তার স্ত্রীর কোভিড-১৯ হয়েছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। কিন্তু মিস্টার এসমাইলি সোমবার জোর দিয়ে বলেছিলেন, মিজ জাঘারি-র‍্যাটক্লিফ নিয়মিতভাবেই তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করছেন এবং 'তাদেরকে জানিয়েছেন যে তিনি সুস্থ আছেন'। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ২০১৬ সালে মিজ জাঘারি-র‍্যাটক্লিফকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। যুক্তরাজ্যও বলে আসছে তিনি নির্দোষ। তেহরানের এভিন কারাগারে বন্দী রয়েছেন নাজানিন জাঘারি-র‍্যাটক্লিফ। বিশ্বজুড়ে ৯০ হাজারেরও বেশি মানুষ কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছে। গত বছর অসুখটি ছড়িয়ে পড়ার পর মারা গেছে ৩,১১০ জন। বেশিরভাগ মৃত্যুই হয়েছে চীনে। এই সংক্রমণে ইরানে ২ সপ্তাহেরও কম সময়ে ৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, নিশ্চিত আক্রান্তের সংখ্যা টানা দ্বিতীয় দিনের মতো ৫০% বৃদ্ধি পেয়েছে। এ পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২,৩৩৬ জনে। যদিও প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইরানের সাথে সম্পৃক্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ঘটনার উল্লেখ পাওয়া গেছে আফগানিস্তান, কানাডা, লেবানন, পাকিস্তান, কুয়েত, বাহরাইন, ইরাক, ওমান, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। মঙ্গলবার নতুন করে করোনাভাইরাসে ৮৩৫ জন আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছে ইরান। ইরানের উচ্চ পদ��্থ অনেক কর্মকর্তাও ভাইরাস সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। সম্প্রতি দেশটির জরুরী চিকিৎসা সেবা বিভাগের প্রধান পিরহোসেইন কোলিভান্দ আক্রান্ত হয়েছেন। পার্লামেন্টের ২৯০ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করে ২৩ জন আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। সোমবার দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলী খামেনির উপদেষ্টা কাউন্সিলের এক সদস্য কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে জানানো হয়। রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়, মোহাম্মদ মীরমোহাম্মদী নামে ৭১ বছর বয়সী ওই সদস্যের আয়াতোল্লাহ খামেনির সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। বৃক্ষ রোপন কর্মসূচীতে হাতে প্লাস্টিকের গ্লাভস পরেন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনি। বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস উপলক্ষে একটি বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচীতে সর্বোচ্চ নেতা খামেনি দেশটির জনগণকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া সব পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। সাথে সরকারের অন্য সব বিভাগকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে তারা যাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সহায়তা করে। আয়াতোল্লাহ খামেনি জোর দিয়ে বলেন যে, ইরানের কর্তৃপক্ষ প্রাদুর্ভাবের মাত্রা সম্পর্কিত কোন তথ্য গোপন করেনি। তিনি বলেন: "আমাদের কর্মকর্তারা প্রথম দিন থেকেই নিষ্ঠা আর স্বচ্ছতার সাথে সব তথ্য প্রকাশ করছে। যাই হোক, যেসব দেশে এই প্রাদুর্ভাব আরো বেশি জটিল আকার ধারণ করেছে তারা তথ্য লুকানোর চেষ্টা করেছে।" তিনি বলেন যে ইরানের প্রাদুর্ভাব "বেশিদিন থাকবে না এবং বন্ধ হয়ে যাবে।" এদিকে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাইদ নামাকি জানিয়েছেন, বুধবার থেকে দেশজুড়ে ভাইরাস পরীক্ষা বা স্ক্রিনিং শুরু হবে। যাদের কোভিড-১৯ হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে এবং যারা স্বাস্থ্য সেবার সুযোগ পাচ্ছেন না তাদের কাছে চিকিৎসা সেবাদানকারী দল পৌঁছে যাবে বলে জানানো হয়। সোমবার তেহরানে পৌঁছায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি বিশেষজ্ঞ দল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একদল বিশেষজ্ঞ যারা সোমবার ইরানে পৌঁছেছেন, তারা দেশটির স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে যে তারা "প্রস্তুতি ও তৎপরতা কার্যক্রম পুনর্মূল্যায়ন করে দেখবে, বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, পরীক্ষাগার এবং প্রবেশ পয়েন্টগুলো পরিদর্শন করবে এবং সেখানে কারিগরি সহায়তা দেবে।" যে বিমানটিতে করে ওই বিশেষজ্ঞ দলটি গিয়েছে সেখানে চিকিৎসা সরঞ��জাম, সুরক্ষামূলক যন্ত্রপাতি রয়েছে যা দেশটির ১৫ হাজার স্বাস্থ্যসেবা কর্মীকে সহায়তা দেবে। এছাড়া এক লাখ মানুষকে সেবা দেয়ার ও ভাইরাস পরীক্ষা করার কিটও বহন করা হয়েছে ওই বিমানটিতে। আরো খবর: করোনাভাইরাস: শিশুকে যেভাবে রোগটি সম্পর্কে বোঝাবেন ‘আমি আমার মাকে যে কারণে বিয়ে করলাম’ দিল্লিতে যেভাবে মুসলমানদের বাড়িঘর টার্গেট করা হয় বিয়ের মঞ্চ থেকে সরাসরি ক্রিকেট মাঠে গেলেন যে বর বিবিসি জরিপে শ্রেষ্ঠ বাঙালি: ১৪- অমর্ত্য সেন ইরান ৫৪,০০০ কারাবন্দীকে সাময়িক মুক্তি দিয়েছে। বন্দীতে ঠাসা কারাগারগুলোতে নতুন করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতেই এই উদ্যোগ। +text: এই রানা প্লাজা ধসেই ১১০০ এর বেশি শ্রমিকের মৃত্য হয় কিন্তু ঘটনার দিন সকালে ভবনের মালিক সোহেল রানা এবং পোশাক কারখানাগুলোর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ মিলে শ্রমিকদের কাজে যেতে বাধ্য করে। পোশাক কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন থাকলে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শ্রমিকদের কাজে যেতে বাধ্য করানো যেত না বলে মনে করেন শ্রমিক নেতারা। রানা প্লাজা ধসের ছয় মাসের মধ্যেই বাংলাদেশের শ্রম আইন সংশোধন করে শ্রমিকদের শর্তসাপেক্ষে ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার সহজ করা হয়। শ্রম মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুযায়ী, রানা প্লাজা ধসের আগে কারখানা-ভিত্তিক ট্রেড ইউনিয়নের সংখ্যা ১৩৪টি থাকলেও তাদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ছিল নিষ্ক্রিয়। শ্রম আইন সংশোধনের পর এখন কারখানা-ভিত্তিক ট্রেড ইউনিয়নের সংখ্যা প্রায় ৬০০টি। শ্রমিক অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংস্থা বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজ বা বিলস-এর প্রধান নির্বাহী সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমদকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, রানা প্লাজা ধসের পর গত পাঁচ বছরে শ্রমিক অধিকারের প্রশ্নে কতটা পরিবর্তন এসেছে? গার্মেন্ট মালিক ও শ্রমিকরা বলছেন, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর পোশাক খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেছে। মি: আহমেদ বলেন, "মনোযোগ কিছুটা বেড়েছে। শ্রমিক অধিকারের প্রশ্নে যে অবজ্ঞার সংস্কৃতি ছিল সেটা কিছুটা কেটেছে।" ট্রেড ইউনিয়নের সংখ্যা বাড়লেও শ্রমিকদের দর কষাকষির সামর্থ্য খুব একটা বাড়েনি বলে মি: আহমেদ মনে করেন। বিলসের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, গত এক বছরে বাংলাদেশের বিভিন্ন গার্মেন্ট কারখানায় যেসব অসন্তোষ হয়েছে তার মধ্যে ৫৫ শতাংশই হয়েছে বেতন দেরিতে দেবার জন্য। শ্রম আইন যখন সংশোধন ক��া হয় তখন অনেকে সেটিকে 'দায়সারা' হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। কারণ আইন এমনভাবে সংশোধন করা হয়েছে যে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন গঠন বাস্তবে বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করতে হলে একটি কারখানার ত্রিশ শতাংশ শ্রমিকের সম্মতি লাগবে। এ আইন সংশোধনের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন শ্রম মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মিকাইল শিপার। তিনি বলছেন, বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে এটি করা হয়েছে এবং শ্রমিক অধিকারের প্রশ্নে এটি বড় অগ্রগতি। আরো পড়ুন: 'তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেননি' ব্রিটেনে চাপের মুখে ফেসবুক, সরকারি হুঁশিয়ারি-মামলা মসজিদের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন যে সাবেক ব্রিটিশ সৈনিক অনুমতি ছাড়া অন্যের ছবি ব্যবহারের শাস্তি কী? "হঠাৎ করে আমি যদি বলি চারজন শ্রমিক একজোট হলেই ট্রেড ইউনিয়ন হবে, তখন ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিয়ে সবাই ব্যস্ত থাকবে। উৎপাদন ব্যাহত হবে। এসব কারণেই আমরা লিমিটেশন (সীমাবদ্ধতা) রেখেছিলাম," বলেছেন মি: শিপার। মালিক পক্ষ বলছে, রানা প্লাজা ধসের পর শ্রমিক অধিকারের প্রশ্নে মালিকরা যথেষ্ট মনোযোগ দিয়েছে। সেজন্য গত পাঁচ বছরে বড় ধরনের কোন শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটেনি বলে মালিক পক্ষ মনে করে। তৈরি পোশাক-খাতের অন্যতম শীর্ষ স্থানীয় মালিক আরশাদ জামাল বলছেন, মালিকদের মনোভাবেও এখন পরিবর্তন এসেছে। এখানেই ছিলো রানা প্লাজা মি: জামাল বলেন, "যখন কোন ঘর বা জায়গা গোছানো হয়, তখন তার সাথে আচরণও গোছানো হয়। গত পাঁচ বছরে ন্যূনতম মজুরি একবার রিভাইজ (পর্যালোচনা) হয়েছে এবং প্রতি বছর পাঁচ শতাংশ হারে বাড়ানো হয়েছে। এবার মজুরি বোর্ডের জন্য আমরাই আহবান করেছি। এ থেকে আপনি বুঝতে পারছেন যে তাদের অধিকারের প্রশ্নে আমাদের মাইন্ড-সেটে (মনোভাবে) পরিবর্তন হয়েছে।" কিন্তু শ্রমিকরা কী বলছেন? তাদের অধিকার এবং কথা বলার জায়গা এখন কতটা তৈরি হয়েছে? একটি কারখানার কয়েকজন শ্রমিক বলছিলেন, এখন যে কোন কথা সহজে মালিক পক্ষের কাছে পৌঁছে দেয়া যায়। একজন নারী শ্রমিক বলছেন, " আমাদের এখানে অভিযোগ বাক্স আছে। আমাদের ফ্যাক্টরিতে প্রত্যেকটা লাইন থেকে অপারেটর ডাক দিয়া নিয়া যায়। তারা অসুবিধা-সুবিধার কথা জিজ্ঞেস করে।" তবে শ্রমিক নেতাদের অভিযোগ হচ্ছে, অনেক শ্রমিক বুঝতেই পারে না তাদের অধিকার কতটা। তাছাড়া ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের জন্য ত্রিশ শতাংশ শ্রমিক যা��ে একত্রিত হতে না পারে সেজন্য মালিকরা নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বলে অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া ট্রেড ইউনিয়ন করতে গেলে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের অভিযোগ কিংবা ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগও রয়েছে। রানা প্লাজা ধসের ফলে বিশ্বজুড়ে ভাবমূর্তির সংকটে পড়ে বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্প শিল্প মালিক আরশাদ জামাল বলছেন, যে ধরনের অভিযোগ তোলা হচ্ছে বিষয়টি সে রকম নয়। এজন্য শ্রমিক নেতাদেরও দায় আছে। সদস্য সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন পরস্পরের সাথে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ফলে আইন অনুযায়ী ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের জন্য যতজন শ্রমিক প্রয়োজন সেটি তারা জোগাড় করতে পারছেন না বলে এ মালিক জানান। শ্রমিক অধিকার নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের অনেকেই বলছেন, গত পাঁচ বছরে বড় ধরনের শ্রমিক অসন্তোষ ঘটেনি। কিন্তু তাই বলে অসন্তোষ নেই সে কথা বলা যাবে না। বিভিন্ন সময় অসন্তোষকে চাপা দেবার জন্য সরকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে প্রবল চাপ তৈরি করেছে শ্রমিক নেতাদের উপর। এমনটাই অভিযোগ তাদের। কিন্তু সরকার দাবী করছে অসন্তোষ নয়, বরং তাদের গৃহীত নানা সংস্কারের কারণেই শ্রমিকরা এখন সে পথে পা বাড়াচ্ছে না। রানা প্লাজা ধসের আগের দিনই সে ভবনটিতে ফাটলের বিষয়টি নজরে এসেছিল সবার। এনিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রতিবেদনও প্রচারিত হয়েছিল। +text: ক্যান্সার চিকিৎসায় বড় অগ্রগতির খবর গবেষকদের। তারা বলছেন, এখন থেকে ক্যান্সারের চিকিৎসায় পুরো শরীরের জন্য ঔষধ না দিয়ে শুধুমাত্র আক্রান্ত কোষগুলোর চিকিৎসা সম্ভব। ওয়েলকাম স্যাঙ্গার ইন্সটিটিউট এর একটি দল ত্রিশ ধরণের ক্যান্সার থেকে ক্যান্সারের কোষগুলো ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে। এখানে ঔষধ প্রয়োগ করে প্রায় ছয়শো নতুন ধরনের ঝুঁকি নিরসন করা সম্ভব হয়েছে বলে তারা জানিয়েছেন। এ মুহূর্তে ক্যান্সারের চিকিৎসায় কেমোথেরাপি দেওয়া হয় এবং এর প্রতিক্রিয়ায় পুরো শরীরেই কমবেশি ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। গবেষকদের একজন ডা. ফিওনা বেহান। তার মা ক্যান্সারে দু'বার আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন। প্রথম দফায় ডা. বেহানের মাকে যে কেমোথেরাপি দেওয়া হয়েছিলো তাতে তার হৃদযন্ত্রের ক্ষতি হয়েছিলো। ফলে দ্বিতীয় বার তিনি যখন আবার ক্যান্সার আক্রান্ত হলেন তখন চিকিৎসা নেওয়ার মতো অবস্থা আর তার ছিলো না। ডা. বেহান বিবিসিক��� বলছেন, "এখন যে চিকিৎসা আমরা করছি তা ক্যান্সার রোগীর পুরো শরীরের চিকিৎসা। আমরা সুনির্দিষ্টভাবে ক্যান্সার কোষগুলোকে চিহ্নিত করছিনা।" "এ গবেষণায় আমরা ক্যান্সার কোষগুলোর দুর্বলতম স্পটগুলোকে শনাক্ত করেছি এবং এটি আমাদের ঔষধ তৈরিতে সহায়তা করছে।" তিনি বলেন, "এগুলো শুধু ক্যান্সার কোষগুলোরই চিকিৎসা দেবে এবং ভালো কোষগুলোকে অক্ষত রাখবে।" ক্যান্সার নিয়ে যে সুখবর আসছে আগামী দিনগুলোয় বাংলাদেশে জরায়ু ক্যান্সার নিয়ে যে সংকোচ ক্যান্সার চিকিৎসায় নতুন উপায় 'ভার্চুয়াল টিউমার' কীভাবে বাঁধাকপি ক্যান্সার ঠেকাতে পারে গবেষকদের বিশ্বাস তাদের কাজ ক্যান্সারের নতুন ঔষধ তৈরিতে ভূমিকা রাখবে। জিনগত অস্বাভাবিকতা ক্যান্সার মানুষের শরীরের ভেতরের কোষগুলোকে পরিবর্তন করে দেয়। ফলে ডিএনএ নির্দেশনাও পরিবর্তন হয়ে যায়। পরে ধীরে ধীরে আক্রান্ত কোষগুলো ছড়াতে থাকে ও এক পর্যায়ে মানুষকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। এখন গবেষকরা বলছেন, তারা ক্যান্সার জিনগুলো অকার্যকরের পথে অগ্রগতি অর্জন করেছেন এবং তারা দেখতে চেয়েছেন যে কোনগুলো বেঁচে থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় ৩০ ধরনের ক্যান্সার থেকে ল্যাবরেটরিতে বেড়ে ওঠা ৩০০টির বেশি টিউমারের জিন বাধাগ্রস্ত করেছেন তারা। এজন্য তারা বিশেষ ধরণের জেনেটিক টেকনোলজি ব্যবহার করেছেন, যেটি গত বছর চীনে ব্যবহৃত হয়েছিলো। ডিএনএতে কাজ করার জন্য এটি মোটামুটি সহজ ও নতুন। নতুন এ গবেষণা ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য যে ধারণা নিয়ে এসেছে সেটি চিন্তা করা এক দশক আগেও অসম্ভব ছিলো বলে মনে করা হচ্ছে। জার্নাল নেচারে এ গবেষণার বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে যেখানে গবেষক ৬ হাজারের মতো গুরুত্বপূর্ণ জিন চিহ্নিত করেছেন। ডা. বেহান বলছেন, "আমি বুঝতে পারছি ক্যান্সার সেলগুলোতে কী হচ্ছে - যাতে করে সুনির্দিষ্টভাবেই ওই কোষগুলোর দিকে বন্দুক তাক করা যায়।" গবেষকদের প্রধান লক্ষ্য প্রত্যেকটি ধরণের ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য একটি 'ক্যান্সার ডিপেনডেন্সি ম্যাপ' প্রণয়ন করা। এর ফলে চিকিৎসকরা টিউমারগুলো টেস্ট করে ক্যান্সার আক্রান্ত কোষগুলোকে ধ্বংসের জন্য ঔষধ দিতে পারবেন। "এটা লেজার সাইট প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ," বিবিসিকে বলেছেন ডা. বেহান। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: 'কিছু ওয়াজে সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ ছড়াচ্ছে' লোকসভা নির্বাচন: শ���রু হলো বিশ্বের বৃহত্তম ভোট উৎসব ব্রেক্সিট কার্যকরে আরো ছয় মাস সময় পেয়েছে ব্রিটেন ক্যান্সার চিকিৎসায় নতুন সাফল্যের খবর দিলেন যুক্তরাজ্যের গবেষকরা এবং একই সাথে তারা চিকিৎসার জন্য নতুন কিছু ধারণাও নিয়ে এসেছেন। +text: ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করেছিলো ছাত্রলীগ ছাড়া সবাই। ভিপি পদে পরাজিত হয়েছেন ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। প্রায় দু হাজার ভোটের ব্যবধানে তাকে হারিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ভিপি প্রার্থী নুরুল হক নুর। রাত তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড: মোঃ আখতারুজ্জামান যখন ভিপি পদে ফল ঘোষণা করে তখন বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ কর্মীরা 'মানিনা..মানিনা..ভুয়া..ভুয়া' শ্লোগানে সিনেট ভবন প্রকম্পিত করে তোলে। ফল ঘোষণাস্থলে ভিসিকে ঘিরে দীর্ঘক্ষন ধরে ছাত্রলীগ কর্মীদের প্রতিবাদের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। ঘোষিত ফল অনুযায়ী নুরুল হক নুর ১১ হাজার ৬২ ভোট পেয়েছেন আর শোভন পেয়েছেন ৯ হাজার ১২৯ ভোট। ওদিকে ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানি এবং সহ সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে নির্বাচিত হয়েছেন সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। ভোট বাতিল করার মতো কিছু হয় নি: ঢাবি কর্তৃপক্ষ ডাকসু: নানা অনিয়মের অভিযোগে ভোট বর্জন, বিক্ষোভ নির্বাচিত অন্যদের মধ্যে রয়েছেন সাদ বিন কাদের চৌধুরী (স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক), মো:আরিফ ইবনে আলী (বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি), লিপি আক্তার (কমনরুম ও ক্যাফেটারিয়া), শাহরিয়া তানজিন অর্নী ( আন্তর্জাতিক সম্পাদক), মাজহারুল কবির শয়ন (সাহিত্য সম্পাদক), আসিফ তালুকদার (সংস্কৃতি সম্পাদক), শাকিল আহমেদ তানভীর (ক্রীড়া সম্পাদক), শামস-ঈ-নোমান (ছাত্র পরিবহন) ও আখতার হোসেন (সমাজসেবা সম্পাদক)। সদস্য পদে বিজয়ীরা হলেন - যোশীয় সাংমা চিবল, রকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য, তানভীর হাসান সৈকত, তিলোত্তমা সিকদার, নিপু ইসলাম তন্বি, রাইসা নাসের, সাবরিনা ইতি, রাকিবুল হাসান রাকিব, নজরুল ইসলাম, মোছা ফরিদা পারভীন, মুহা. মাহমুদুল হাসান, সাইফুল ইসলাম রাসেল ও রফিকুল ইসলাম সবুজ। ভিসিকে ঘিরে কর্মী��ের বিক্ষোভ থামানোর চেষ্টা করছন ছাত্রলীগ সভাপতি। অনিয়মের অভিযোগ ও বর্জনের ঘোষণা দীর্ঘ ২৮ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোটে কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করে পুনঃতফসিলের দাবি জানিয়েছে ছাত্রলীগ ছাড়া বাকি সব প্যানেল। একে "প্রহসনের নির্বাচন" উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন ভোট বর্জন করা প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা। উপাচার্যের কার্যালয়ের বাইরে বিক্ষোভ সমাবেশ করে তারা আগামী কালের (মঙ্গলবার) ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার আগ মুহুর্তে বেলা দেড়টার দিকে ছাত্রদল এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সম্মিলিতভাবে সংবাদ সম্মেলন করে প্রগতিশীল ছাত্রজোট, ছাত্র মৈত্রী, ছাত্র মুক্তি জোট, সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, স্বতন্ত্র জোট ও স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদ। প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্য প্যানেলের ডাকসুর সহ-সভাপতি পদপ্রার্থী লিটন নন্দী তার ওপর হামলার অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেন এবং পুনরায় ভোটের দাবি জানান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে বেলা ১১টার দিকে তিনি ভোট পরিস্থিতি পরিদর্শনে গেলে ক্ষমতাসীন ছাত্র লীগের কয়েকজন কর্মী তাকে ধাওয়া দেয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। এর আগে স্বতন্ত্র জোট তাদের নিজস্ব ফেসবুক পেইজে ভোর্ট বর্জনের ঘোষণা দেয়। সেখানে তারা জানান, "সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে, ছাত্রলীগ এবং প্রশাসনের সীমাহীন দুর্নীতির কারণে এবং অরণি সেমন্তি খান ও শ্রবণা শফিক দীপ্তিকে শারীরিকভাবে আক্রমন করায় স্বতন্ত্র জোট ডাকসু ২০১৯ বর্জন করছে।" ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি ) পদে নির্বাচিত হয়েছেন কোটা আন্দোলনের নেতা হিসেবে পরিচিত সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্রার্থী নুরুল হক নুর। +text: গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে ওড়াকান্দির ঠাকুরবাড়ি ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে ওড়াকান্দিতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরের সম্ভাব্যতা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। তবে স্থানীয় প্রশাসন বলছেন যে মি. মোদীর এমন কর্মসূচির বিষয়ে তারা এখনও অবগত নন। উপ���েলা নির্বাহী কর্মকর্তা রথীন্দ্রনাথ রায় জানিয়েছেন, মতুয়া সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান ওড়াকান্দিতে, কিন্তু সেখানে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী যাবেন কি-না, সে বিষয়ে কোন নির্দেশনা তারা পাননি। কাশিয়ানী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুব্রত ঠাকুর নিজেও মতুয়া সম্প্রদায়েরই একজন এবং 'মতুয়াবাদ'-এর প্রতিষ্ঠাতা হরিচাঁদ ঠাকুরের বংশধর। মি. ঠাকুর বিবিসি বাংলাকে নিশ্চিত করেছেন যে ওড়াকান্দিতে সরকারের নানা সংস্থার লোকজনকে আসা যাওয়া করতে দেখা যাচ্ছে, তবে নরেন্দ্র মোদী আসবেন কি-না তা তারা এখনও জানেন না। তবে বাংলাদেশ মতুয়া মহাসংঘ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুবল চন্দ্র রায় বলেন, মন্দির পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত এখনও না এলেও তারা আশা করছেন যে মি. মোদীর এই কর্মসূচি শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত হবে। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: ভারতের মাদ্রাসায় হিন্দু ধর্মগ্রন্থ পড়ানোর উদ্যোগ সরকারের মাদ্রাসায় হিন্দু ছাত্রীর অসামান্য সাফল্য হিন্দু নয়, ভারতের আদিবাসীরা চান নতুন সার্না ধর্মের স্বীকৃতি প্রেম ও ধর্ম নিয়ে লড়াইয়ের বলি 'গর্ভের শিশু' ওড়াকান্দিতে সমবেত হন সারা বিশ্ব থেকে আসা মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ তিনি বলেন, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর আসার খবরে তারা উচ্ছ্বসিত এবং আশা করছেন যে সফরের দ্বিতীয় দিনে মি. মোদী ওড়াকান্দির মন্দিরে যাবেন। মুজিব জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ২৬শে মার্চ দু'দিনের সফরে ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। সফরকালে তিনি গোপালগঞ্জেরই টুঙ্গিপাড়ায় বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা জানাবেন বলে কথা রয়েছে। মতুয়া কারা, ওড়াকান্দি কেন আলোচনায় গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার একটি ইউনিয়ন হলো ওড়াকান্দি। এখানেই ১৮১২ সালে জন্মেছিলেন হরিচাঁদ ঠাকুর। মূলত তিনিই সূচনা করেন মতুয়াবাদের, যা পরে বিস্তৃত হয় তার পুত্র গুরুচাঁদ ঠাকুরের হাত ধরে। মতুয়া সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি বিশেষ সম্প্রদায়, যারা হরিচাঁদ ঠাকুরকেই তাদের দেবতা মান্য করে। মতুয়া মতবাদে বিশ্বাসীরা একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী এবং এতে নারী ও পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা ছাড়াও বিধবা বিবাহকে উৎসাহিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুবল চন্���্র রায়। ওড়াকান্দিতে পূণ্যস্নানে অংশ নেন ভক্তরা মি. রায় বিবিসিকে বলেন, ওড়াকান্দিতেই মতুয়াদের প্রধান মন্দির এবং প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের ত্রয়োদশী তিথিতে হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মদিনে সারা বিশ্ব থেকে লাখ লাখ মতুয়া এখানে সমবেত হন ও পুণ্যস্নানে অংশ নেন। "হিন্দু ধর্মে যারা ব্রাহ্মণের শাসনে অবহেলিত ছিলো, যাদের নমঃশূদ্র বা চণ্ডাল বলা হতো, তাদের জন্যই জন্মেছিলেন হরিচাঁদ ঠাকুর। তিনি ব্রাক্ষ্মনদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন," বলছিলেন তিনি। তখন ব্রাহ্মণ ছাড়া কারও শিক্ষার অধিকার ছিলো না, যোগ করেন সুবল রায়। তবে গুরুচাঁদ ঠাকুর বৃহত্তর ফরিদপুর, বরিশাল, যশোর ও খুলনায় প্রায় চার হাজার পাঠশালা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। "তখন নারীদের অধিকার ছিলো না। ঠাকুর সেখানে নারী শিক্ষার আন্দোলন করেছেন। বিধবা বিবাহ প্রচলনের পক্ষে কাজ করেছেন। আমাদের মধ্যে কোন জাতিভেদ নাই। আমরা একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী"। ওড়াকান্দির স্থানীয়রা বলছেন, সম্প্রতি ভারতীয় হাইকমিশনের প্রতিনিধিরা মন্দির এলাকা পরিদর্শন করেছেন। "আমরা আশা করছি নরেন্দ্র মোদী আসবেন। ঠাকুর বংশের সন্তান শান্তনু ঠাকুরও আসবেন। আমাদের এ অঞ্চলে হিন্দুদের অধিকাংশই মতুয়া। তাদের জন্য এটি অত্যন্ত আনন্দের," বলছিলেন সুবল চন্দ্র রায়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চলতি মাসেই ঢাকা সফরের সময় গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দিতে অবস্থিত মতুয়া সম্প্রদায়ের একটি মন্দির পরিদর্শনে যেতে পারেন এমন খবরে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। +text: প্রিয়াঙ্কা চোপড়াকে শাস্তি হিসেবে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়ার কথাও বলেছেন অনেকে। গোয়েন্দা কাহিনীর উপর ভিত্তি করে তৈরি থ্রিলার কোয়ান্টিকোর সাম্প্রতিক একটি পর্বে দেখা যায় এর প্রধান চরিত্র, যাতে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া অভিনয় করছেন, কাশ্মীরের উপর অনুষ্ঠেয় এক সম্মেলনের আগে, কয়েকজন হিন্দু জাতীয়তাবাদীর একটি হামলা পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছেন। এই কাহিনীতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন তার বহু ভারতীয় ভক্ত এবং তাকে অনলাইনে আক্রমণ করেছেন। তাকে তারা উল্লেখ করছেন একজন 'বিশ্বাসঘাতক' হিসেবে। এর জবাবে মিস চোপড়া টুইট বার্তায় নিজেকে একজন 'গর্বিত ভারতীয়' বলে উল্লেখ করেছেন। এবং সিরিজের কাহিনীর কারণে কারো মনে আঘাত লেগে থাকলে তার জন্যে দুঃখও প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, কাউকে আঘাত করা তার কোন উদ্দেশ্য ছিল না। 'ব্লাড অফ রোমিও' বা 'রোমিওর রক্ত' নামের এই পর্বটি প্রচারিত হয় গত ১লা জুন। এই পর্বে দেখা যায় যে নাটকের প্রধান চরিত্র, যিনি একজন এফবিআই গোয়েন্দা এলেক্স পারিশ, তিনি একটি সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা ভেঙে দিয়েছেন। এই পরিকল্পনা করা হয়েছিল কাশ্মীর সম্মেলনের আগে এবং মিস চোপড়া যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি আবিষ্কার করেন যে আসলে পাকিস্তানিরা নয়, বরং কয়েকজন হিন্দু জাতীয়তাবাদী মিলে এই হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন। এবং হামলার জন্যে পাকিস্তানিদের দায়ী করার জন্যে তারা আক্রমণকারীরা একটি নাটকও সাজিয়েছিল। ভারত এবং পাকিস্তান দুটো দেশই দাবী করে কাশ্মীর তাদের অংশ এবং এই অঞ্চলকে কেন্দ্র করে ১৯৪৭ সালের পর পরমাণু শক্তিধর এই দুটো দেশ দু'বার যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। বিশেষ সাক্ষাৎকারে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া কোয়ান্টিকোর এই পর্বটি প্রচারিত হওয়ার পর অনলাইনে প্রিয়াঙ্কা চোপড়াকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করা হয়। অনেকে তাকে উল্লেখ করেন ভারতের জন্যে 'অপমান', 'লজ্জা' হিসেবে আবার অনেকেই অভিযোগ করেন যে সিরিজের এই পর্বটিতে হিন্দুদের উপর শুধু নয়, এর মাধ্যমে ভারতের উপরেও আক্রমণ করা হয়েছে। প্রতারক, দেশদ্রোহী উল্লেখ করে তাকে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়ার কথাও বলেছেন কেউ কেউ । টুইটারে একজন লিখেছেন, "প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার পাসপোর্ট বাতিল করা হোক। তাকে যেন ভারতে ঢুকতে দেওয়া না হয়...আপনি হলিউডে থাকুন এবং পাকিস্তানিদের জুতা চাটতে থাকুন।" আবার অনেকে প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার পক্ষেও বলেছেন। তাদের অনেকে বলেছেন, এটা শুধু টেলিভিশনের একটি নাটক যার সাথে বাস্তবের কোন সম্পর্ক নেই। "এরকম একটি কাল্পনিক কাহিনীর জন্যে আপনি কেন ক্ষমা চাইছেন?" প্রশ্ন করেছেন একজন টুইটার ব্যবহারকারী। দুঃখ প্রকাশের পরেও প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার প্রতি কারো কারো ক্ষোভ একটুও কমেনি। তারা বলছে, "আপনি কাহিনীটি পড়েছেন, রিহার্স করেছেন তারপর বহুদিন ধরে এটাতে অভিনয় করেছেন। তারপরেও এরকম ভুল হয় কীভাবে?" আরো পড়তে পারেন: মাইল্ড স্ট্রোক সম্পর্কে যা জানা জরুরি এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল বিশ্বকাপ ২০১৮: প্রধান ৮ দাবিদারের শক্তি ও দুর্বলতা এর আগেও সোশাল মিডিয়াতে প্রিয়াঙ্কা চোপড়াকে আক্রমণ করা হয়েছে। শুধু সামাজিক ��োগাযোগ মাধ্যমেই নয়, রাজধানী দিল্লিতেও এর প্রতিবাদে হিন্দু কট্টরপন্থীরা রাস্তায় বিক্ষোভ করেছে। এই সিরিজের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এবিসি 'এরকম একটি জটিল রাজনৈতিক ইস্যুতে' কাহিনী তৈরি করার কারণে দুঃখ প্রকাশ করেছেন তবে তারা এজন্যে মিস চোপরাকে আক্রমণ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেছে, এই কাহিনী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া লিখেননি, এই পর্বটি পরিচালনাও করেন নি, সিরিজের কাহিনী তৈরির পেছনে তার কোন ভূমিকাও ছিলো না। প্রিয়াঙ্কা চোপড়াকে এর আগেও ভক্তদের দিক থেকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। গত বছর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে বৈঠকের সময় তিনি এমন একটি কাপড় পরেছিলেন যাতে তার পা দেখা যাচ্ছিল। সোশাল মিডিয়াতে তখনও তাকে এজন্যে আক্রমণ করা হয়েছিল। এছাড়াও তিনি যে সম্প্রতি বাংলাদেশে মুসলিম রোহিঙ্গা শরণার্থীদের শিবির দেখতে গিয়েছিলেন তাতেও তার সমালোচনা করা হয়েছে। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ভারতীয় সিনেমায় অভিনয়ে সাফল্য অর্জন করার পর তিনি আন্তর্জাতিক সিনেমাতেও নাম লিখিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আগে ৫০টিরও বেশি ভারতীয় ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের একটি টিভি সিরিজের কাহিনীকে কেন্দ্র করে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে ভারতীয় অভিনেত্রী ও বলিউড সুপারস্টার প্রিয়াঙ্কা চোপড়া তার ভক্তদের কাছে ক্ষমা চেয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। +text: উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ ঘুমাতে যাবার আগে গ্রহণ করলে সেটা সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হয়। ইউরোপীয় হার্ট জার্নালে বলা হচ্ছে, এটি একটি সহজ টিপস যা কি না জীবন বাঁচাতে পারে। সকালের বদলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ যদি রাতে ঘুমাতে যাবার আগে খাওয়া হয় তবে তা হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক থেকে বেশি সুরক্ষা দিতে পারে। গবেষণায় এমনটাই পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞদের ধারনা আমাদের দেহঘড়ি এবং প্রাকৃতিক যে ২৪ ঘণ্টার ছন্দ, সেটি আমাদের ওষুধ গ্রহণের প্রতিক্রিয়ায় প্রভাব ফেলে। ওষুধকে আপনার দেহঘড়িরসাথে মানিয়ে নিন দিনের কোন একটি নির্দিষ্ট সময়ে হার্টের ওষুধসহ বেশকিছু ওষুধ গ্রহণ করলে তা ভালো কাজ করে - এমন প্রমাণ রয়েছে। সর্বশেষ পরীক্ষাটি এ যাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রায় ১৯০০০ মানুষের ওপর করা হয়, দেখা হয় বিষয়টি উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের ক্ষেত্রে ঘটে কিনা। স্প্যানিশ ওই গবেষণায়: রাতের বেলায় রক্তচাপ কমে যায়, কারণ তখ�� আমরা বিশ্রাম নেই বা ঘুমাই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, এটি যদি না হয়, রক্তচাপ যদি সবসময়ই বেশি থাকে তবে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। যেসব রোগী ঘুমাবার আগে হাইপার-টেনশনের ওষুধ খাচ্ছেন তাদের রক্তচাপ দিনে ও রাতে উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাচ্ছে। উচ্চ রক্তচাপ ডাক্তাররা যাকে বলেন হাইপার টেনশন, এই রোগে আক্রান্ত সব রোগীদের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা ঘুমনোর সময় ওষুধ খাবার পরামর্শ দেন রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যে। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, যেসব রোগী ঘুমাবার আগে হাইপার-টেনশনের ওষুধ খাচ্ছেন তাদের রক্তচাপ দিনে ও রাতে উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাচ্ছে। বিষয়টির বিপরীত ব্যাপার ঘটছে সকালে ওষুধ খাওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে। গবেষণার শীর্ষ গবেষক ভিগো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর রেমন হার্মিদা বলেছেন যে, চিকিৎসকরা রোগীদের এসব কিছু বিবেচনা করেই ওষুধ গ্রহণে পরামর্শ দিতে পারেন, "এটি যেমন চিকিৎসার পেছনে বাড়তি ব্যয় হ্রাস করে, সেইসাথে বাঁচাতে পারে বহু প্রাণ।" তবে তার মতে বিভিন্ন স্থানের মানুষের ওপর ভিন্ন ভিন্ন মাত্রার ব্র্যান্ডের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ একইভাবে কাজ করে কিনা তার জন্যে আরও পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন। আরও পড়তে পারেন: বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে ওষুধ প্রতিরোধী নতুন সুপারবাগ শুধুমাত্র একজন রোগীর জন্য ওষুধ বানালেন বিজ্ঞানীরা জিন পরীক্ষা: আসছে শুধু আপনার জন্য তৈরি ওষুধ ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের ভেনেসা স্মিথ বলছেন, "যদিও এই গবেষণাটি এই অঞ্চলে চালানো পূর্ববর্তী গবেষণার ফলাফলকে সমর্থন করে তারপরও ভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর মানুষের ওপর বা যারা বিভিন্ন সময়ভিত্তিক কাজ করেন তাদের ওপর এটি চালিয়ে দেখা উচিত। তাহলে সঠিকভাবে প্রমাণ করা যাবে যে রাতে গ্রহণ করা উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ হৃদ-স্বাস্থ্যের জন্যে উপকারী কিনা।" মানুষের জীবন যাপনও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। এক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে: প্রতিদিনের উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সবচেয়ে বেশি কার্যকর হয় যদি সেটি ঘুমাতে যাবার আগে গ্রহণ করা হয়, বলছেন গবেষকরা। +text: যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্য বিরোধের প্রভাব পড়ছে বিশ্ব অর্থনীতিতে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে প্রায় ২৫ শতাংশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং জবাবে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বেইজিং। যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ এমন সময় এলো যখন উভয় দেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা একটি চুক্তির জন্য ওয়াশিংটনে চেষ্টা চালানোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে দেশ দুটি কয়েক মাসের বিরোধের অবসানের কাছাকাছি পৌঁছেছিলো বলে ধারণা করা হচ্ছিলো। চীন এখন বলছে তারা শিগগিরই পাল্টা পদক্ষেপ নেবে। চীন-আমেরিকা বাণিজ্য যুদ্ধ, জিতবে কে? চীন-আমেরিকা বাণিজ্য যুদ্ধ, জিতবে কে? চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধ: সঙ্কটের মুখে চীনা শিল্প? চীন-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে ভূমিকা রেখেছিলেন যে গোপন দূত চীন কিভাবে জবাব দিতে পারে? এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের জবাবে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছিলো চীন। দেশ দুটির মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের মধ্যে যেমন অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে তেমনি বিশ্ব অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলেছে। তবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্প ৩২৫ বিলিয়ন ডলারের চীনা পণ্যের ওপর ২৫% শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। ওদিকে দেশ দুটির মধ্যে বাণিজ্য আলোচনাও চলছে। বৃহস্পতিবার মিস্টার ট্রাম্প বলেছেন তিনি চিনা প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে একটি চমৎকার চিঠি পেয়েছেন এবং হয়তো ফোনে কথা বলবেন। হোয়াইট হাউজের একজন মুখপাত্র বলেছেন শুক্রবার আলোচনা শুরুর জন্য চীনা ভাইস প্রিমিয়ারের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা একমত হয়েছেন। চীনা প্রেসিডেন্টের সাথে ফোনালাপ হতে পারে মার্কিন প্রেসিডেন্টের শুল্ক বাড়ানোর প্রভাব কেমন হবে? দুশো বিলিয়ন ডলারের চীনা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক এ বছরের শুরুতেই হওয়ার কথা ছিলো। আলোচনা চলার কারণে সেটা বিলম্বিত হয়েছে তবে মিস্টার ট্রাম্প এখন বলছেন আলোচনার গতি অত্যন্ত ধীর। যদিও মিস্টার ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির ওপর এর প্রভাব কেমন তা কিছুটা এড়িয়ে গেছেন কিন্তু কিছু আমেরিকান কোম্পানি ও ক্রেতাদের জন্য শুল্ক বাড়ানোটা একটা ধাক্কার মতো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এশিয়ান ট্রেড সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক ডেবোরাহ এলমস বলছেন, "এটা অর্থনীতিতে একটা বড় ধাক্কা দিতে যাচ্ছে"। চীন থেকে আমদানি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বসানোর পর, চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক বসিয়েছে আলোচনায় কেমন প্রভাব ফেলবে? হোয়াইট হাউজের একজন উপদেষ্টা ক্লিটি উইলেমস বলছেন শুল্ক বাড়ানোটাই শেষ খেলা নয়। তবে তিনি আশা করেছেন দ��� পক্ষই আলোচনা অব্যাহত রাখবে। সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছিলো বলেও মনে করা হচ্ছিলো। গত ডিসেম্বরে একটি যুদ্ধ বিরতিতে একমত হওয়ার পর এটাই প্রথম আলোচনা ছিলো। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের 'মেড ইন চায়না টুয়েন্টি টুয়েন্টি ফাইভ' নীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবারের আলোচনায় ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি প্রটেকশনের বিষয়টিও উঠে এসেছে বলে জানা যাচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন চীন আলোচনায় আগ্রহী কারণ এ সমস্যা সমাধানের গুরুত্ব তারা স্বীকার করে। চীন প্রায়শই ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষোভের টার্গেট হয়, বিশেষ করে বাণিজ্য বৈষম্য নিয়ে। যদিও চীনে একটি অংশ মনে করে দেশটির উত্থানকে খর্ব করার জন্যই পশ্চিমারা এ বাণিজ্য যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে। দু পক্ষই ইতোমধ্যেই বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্যের ওপর শুল্ক চাপিয়েছে। চীনের সাথে চলমান বাণিজ্য বিরোধের জের ধরে দেশটির প্রায় দুশো বিলিয়ন ডলারের পণ্যের ওপর শুল্ক আরও বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। +text: পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী মে'র ব্রেক্সিট চুক্তি এ নিয়ে তিন বার হারলো আজ ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ হাউজ অব কমন্সে টেরিজা মে'র চুক্তিটির পক্ষে ২৮৬ এবং বিপক্ষে ৩৪৪ ভোট পড়ে। ব্রেক্সিটের জন্য এটিই ছিল একমাত্র চুক্তি যাতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নেতাদের সাথে ব্রিটেনের মতৈক্য হয়েছিল। কিন্তু এ চুক্তিটি পার্লামেন্টে এতটাই সমালোচিত হয় যে পর পর তিনবার ভোটে দিয়েও এটি পাস করাতে পারলেন না প্রধানমন্ত্রী মিসেস মে। এর আগে ব্রিটেনের সামনে সময়সীমা দেয়া হয়েছিল যে একটা চুক্তির ভিত্তিতে যদি ইইউ ত্যাগ করতে হয় - তাহলে ২৯শে মে'র মধ্যেই সেটা পার্লামেন্টে পাস করাতে হবে। কিন্তু মিসেস মে'র আনা চুক্তিটিই যে শুধু পার্লামেন্টে পাস হয় নি তা নয়, তার আগে যেসব বিভিন্ন বিকল্প প্রস্তাব পার্লামেন্টে তোলা হয়েছিল সেগুলোর কোনটাই পাস হয় নি। এখন ব্রিটেনকে হয়তো কোন চুক্তি ছাড়াই ১২ই এপ্রিল ইইউ ত্যাগ করতে হবে। বিশেষজ্ঞ এবং ব্রেক্সিট-বিরোধীদের আশংকা, এর ফলে ব্রিটেনের অর্থনীতির গুরুতর ক্ষতি হবে। আরো পড়ুন: ব্রেক্সিট ইস্যু বোঝার সহজ সূত্র কেন ব্রেক্সিট নিয়ে নাকাল ব্রিটেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে অন্যদিকে ব্রেক্সিট সমর্থকদের একাংশ বলছেন, মিসেস মে-র চুক্তিতে যে ��্যাকস্টপ পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে, তাতে উত্তর আয়ারল্যান্ড এবং ব্রিটেনের বাকি অংশ - এ দুয়ের জন্য দুই নিয়ম চালু হবে। তাদের মতে, এক দেশে দুই নিয়ম থাকতে পারে না এবং এর ফলে উত্তর আয়ারল্যান্ড কার্যত যুক্তরাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে, ব্রিটেন আইনের মারপ্যাঁচে পড়ে কখনোই ইইউ থেকে বেরুতে পারবে না। পার্লামেন্টে মিসেস মে'র প্রস্তাব হেরে যাবার পর বিরোধীদল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বলছেন, মিসেস মে যদি তার প্রস্তাবে পরিবর্তন আনতে না চান তাহলে তাকে পদত্যাগ করতে হবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, মিসেস মে'র প্রস্তাবটি পার্লামেন্টে পাস না হবার পর এখন অনেক কিছুই ঘটতে পারে। এর মধ্যে কোন চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট, আদৌ ব্রেক্সিট না হওয়া বা বিলম্বিত হওয়া, নতুন কোন প্রস্তাব চূড়ান্ত হওয়া, নতুন করে ইইউতে থাকা-না-থাকা প্রশ্নে গণভোট, মিসেস মে'র পদত্যাগ ও নতুন কারো প্রধানমন্ত্রী হওয়া, অথবা নতুন নির্বাচন - এরকম অনেক সম্ভাবনার কথা বলা হচ্ছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রধান ব্রেক্সিট আলোচক মিশেল বার্নিয়ার বলেছেন, ব্রিটেন এর পর কি করতে চায় - তা ব্রাসেলসকে জানানোর জন্য এপ্রিলের ১২ তারিখ পর্যন্ত সময় আছে। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: ঢাকার সব বহুতল ভবন পরিদর্শন করা হবে: মন্ত্রী এই শতাব্দীর পর কি বিশ্বে মানবজাতি টিকে থাকবে ভারতের যে সম্প্রদায়ে পতিতাবৃত্তিকে ঐতিহ্য ভাবা হয় একাত্তরের যুদ্ধকে কোন চোখে দেখেছে বলিউড ? ব্রেক্সিট অর্থাৎ ব্রিটেনের ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ত্যাগের জন্য প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে-র চুক্তি তৃতীয় বারের মতো প্রত্যাখ্যান করেছে সেদেশের পার্লামেন্ট। +text: বার্লিন প্রাচীর ডিঙাতে গিয়ে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদেরকে স্মরণ করছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল ২৫ বছর আগে এ দিনে পূর্ব ও পশ্চিম বার্লিনকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা এই দেয়াল ভাঙ্গার ঘটনাকে শীতল যুদ্ধের অবসানের প্রতীক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল বলেছেন, দিনটি আনন্দের, কিন্তু এই দেয়াল পেরিয়ে পূর্ব থেকে পশ্চিমে পালাতে গিয়ে যে সব মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, তাদেরকে স্মরণ করার দিন আজ। বার্লিন প্রাচীর তৈরি করা হয়েছিল কমিউনিস্ট পূর্ব জার্মানি থেকে যাতে লোকজন পশ্চিম জার্মানিতে পালিয়ে যেতে না পারে, সেজন্যে। প্রায় ৩০ বছর ধরে এই প্রাচীর শুধু বার্��িনকেই বিভক্ত করে রাখেনি, এটি যেন ছিল কমিউনিস্ট পূর্ব ইউরোপ আর গণতান্ত্রিক পশ্চিম ইউরোপকে ভাগ করে রাখা এক দেয়ালের প্রতীক। পশ্চিমা প্রচার মাধ্যমে এই প্রাচীরকে উল্লেখ করা হতো আয়রন কার্টেন বা লৌহ যবনিকা রূপে। এই প্রাচীর ছিল কমিউনিস্ট পূর্ব ইউরোপ আর গণতান্ত্রিক পশ্চিম ইউরোপকে ভাগ করে রাখা এক দেয়ালের প্রতীক ১৯৮৯ সালে যখন গণবিক্ষোভের মুখে এই প্রাচীর ধসে পড়লো, সেটা স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের এক শক্তিশালী প্রতীক হয়ে উঠলো। আজ এই দেয়াল ভেঙে ফেলার ২৫তম বার্ষিকী উদযাপনের অনুষ্ঠানের সূচনা করলেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল, তিনি বেড়ে উঠেছিলেন কমিউনিস্ট পূর্ব জার্মানিতে। বার্লিন প্রাচীরের পতনকে স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য মানুষের চিরায়ত আকাঙ্ক্ষার প্রতীক বলে উল্লেখ করেন আঙ্গেলা মের্কেল। তিনি বলেন, মানুষের স্বপ্ন যে কোন বাধা মানে না, এই প্রাচীর ধসে পড়ার ঘটনা তার বড় উদাহরণ। ভেঙ্গে ফেলা বার্লিন প্রাচীরের ৯ মাইল জুড়ে আজ আট হাজার বেলুন বেঁধে তৈরি করা হয়েছে এক কৃত্রিম দেয়াল, আজ সকালে বার্লিনকে মনে হচ্ছিল আবার এক বিভক্ত নগরী। সন্ধ্যায় অবশ্য এই বেলুনগুলো উড়িয়ে দেয়া হবে, তাদের স্মরণে যারা এই দেয়াল অতিক্রম করতে গিয়ে পূর্ব জার্মান সীমান্ত প্রহরীদের গুলিতে মারা গিয়েছিলেন। জার্মানিতে আজ গান-বাজনা, উৎসবের মধ্য দিয়ে বার্লিনের দেয়াল ভাঙ্গার রজত জয়ন্তী পালন করা হচ্ছে। +text: নাসার আশঙ্কা ভারতের সাম্প্রতিক অ্যান্টি-স্যাটেলাইট টেস্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনকে বিপদের মুখে ফেলতে পারে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র প্রধান সোমবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, গত সপ্তাহে ভারতের ওই পরীক্ষার জেরে মহাকাশে চারশোরও বেশি 'স্পেস ডেব্রি' , অর্থাৎ ধ্বংস হওয়া স্যাটেলাইটের বিপজ্জনক টুকরো তৈরি হয়েছে। ভারতের মহাকাশ বিজ্ঞানীরা কিন্তু দাবি করছেন, লো অরবিটে তৈরি হওয়া ওই সব ডেব্রি খুব দ্রুতই পৃথিবীতে নেমে আসবে বা বিলীন হয়ে যাবে - ফলে তা থেকে বড় কোনও বিপদের আশঙ্কা নেই। গত বুধবার ভারত যখন সফলভাবে মহাকাশে স্যাটেলাইট ধ্বংস করার কথা ঘোষণা করেছিল, তখন তাদের এটাও জানা ছিল যে এই পরীক্ষার ফলে যে সব স্পেস ডেব্রি তৈরি হবে তার জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে সমালোচনারও সম্মুখীন হতে হবে। কিন্তু মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র প্রধা�� জিম ব্রাইডেনস্টাইন যেরকম কঠোর ভঙ্গীতে এর বিপদের দিকটি তুলে ধরেছেন অতটা ভারতও কিন্তু আশা করেনি। নাসার প্রধান জানিয়েছেন, "ভারতের চালানো ওই একটা টেস্ট থেকে তৈরি হওয়া চারশোরও বেশি ডেব্রি আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি"। যার অন্তত ষাটটা ডেব্রি আমরা ট্র্যাক করতে পারছি, আর তার মধ্যে থেকে অন্তত চব্বিশটা তো আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের কক্ষপথেরও ওপরে চলে গেছে। এটা একটা 'টেরিবল, টেরিবল থিং' - মানে সাঙ্ঘাতিক বিপজ্জনক ঘটনা। স্পেস স্টেশনে মহাকাশচারীরা এই মুহূর্তে সম্পূর্ণ নিরাপদ আছেন ঠিকই - তবে দশ দিনের ভেতর আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে কোনও ডেব্রি আঘাত করতে পারে, সেই ঝুঁকি এখন অন্তত ৪৪ শতাংশ বেড়ে গেছে। ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও-র প্রধান ড: জি সতীশ রেড্ডি বলেছেন নাসার এই মূল্যায়নের সঙ্গে তারা মোটেও একমত নন। ড: রেড্ডি বলছেন, "অ্যান্টি-স্যাটেলাইট টেস্টের জন্য আমরা কিন্তু ইচ্ছে করেই লো অরবিট বা কম উচ্চতার নিশানা বেছে নিয়েছিলাম - কারণ একটি দায়িত্ববান রাষ্ট্র হিসেবে মহাকাশের বিভিন্ন অ্যাসেট যাতে অক্ষত থাকে, নিরাপদ থাকে সেটা দেখাও আমাদের দায়িত্ব ছিল।" "আর তা ছাড়া যেটুকু ডেব্রি তৈরি হয়েছে সেটাও খুব দ্রুত মিলিয়ে যাচ্ছে, আমরাও ঠিক সেটাই চেয়েছিলাম"। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে রেকর্ড করলো ভারত মহাকাশ থেকে ভারতের বাতাস কেন দেখতে ভিন্ন ভারত-পাকিস্তান: পারমাণবিক অস্ত্রে কে এগিয়ে? ধ্বংস করা স্যাটেলাইটটিকে জানুয়ারীতেই মহাকাশে পাঠানো হয়েছিলো ওই পরীক্ষার দিনই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে বিবৃতি দিয়েছিল তাতে বলা হয়েছিল, এমনভাবে লোয়ার অ্যাটমসফিয়ারে ওই পরীক্ষা চালানো হয়েছে যাতে কোনও ডেব্রি-ই না তৈরি হয়। হলেও সেগুলো মাত্র কয়েক সপ্তাহের ভেতর পৃথিবীর বুকে চলে আসবে বলেও দাবি করা হয়েছিল। দিল্লিতে সিনিয়র কূটনৈতিক সংবাদদাতা দেবীরূপা মিত্রও বলছিলেন, সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছিল বড়জোর পঁয়তাল্লিশ দিনের ভেতর ডেব্রি-র সমস্যা মিটে যাবে। ভারতের একটা বড় ভরসা ছিল, বারো বছর আগে চীন যে একই ধরনের পরীক্ষা করেছিল তার হাজার কয়েক ডেব্রি এখনো মহাকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে। সেই জায়গায় ভারতের সামান্য কিছু ডেব্রি লো অরবিটেই সীমাবদ্ধ থাকবে, এমনটাই বলার চেষ্টা হয়েছিল। "কিন্তু এখন নাসার বক্তব্য থেকে মনে হচ্ছে বিপদের ঝুঁকি অতটা তুচ্ছ নয় - আর তাই ভারতকে এখন এই ডেব্রি-জনিত আক্রমণটা সামলাতে হচ্ছে"। ভারতে ডিআরডিও-র সাবেক প্রধান ও বর্তমানে নীতি আয়োগের সদস্য ভি কে সারস্বতও জানাচ্ছেন, ২০১২তেও ভারতের এই ধরনের অ্যান্টি-স্যাটেলাইট পরীক্ষা করার সামর্থ্য ছিল। তবে মহাকাশে ডেব্রি যাতে কম হয়, সে জন্য তারা প্রথমে ইলেকট্রনিক সিমুলেশন ও তা সফল হলে পরে আসল স্যাটেলাইট নিশানা করার কথা বলেছিলেন। গত সপ্তাহের সফল টেস্টে ডেব্রি যাতে যথাসম্ভব কম হয়, ভারতের বক্তব্য তার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপই নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নাসার পর্যবেক্ষণ বলছে, সে চেষ্টা সফল হয়নি এবং ভারতের পদক্ষেপ মহাকাশকে নতুন করে আরও বিপজ্জনক করে তুলেছে। ভারতের সাম্প্রতিক অ্যান্টি-স্যাটেলাইট টেস্ট বা স্যাটেলাইট ধ্বংস পরীক্ষা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনকেও বিপদের মুখে ফেলতে পারে, নাসা প্রকাশ্যে এই অভিযোগ করার পর ভারত এদিন তা জোরালোভাবে অস্বীকার করেছে। +text: ঘন ধোঁয়াশায় ঢেকে গেছে দিল্লির ইন্ডিয়া গেট এসব ঘটছে দূষিত বাতাসের কারণে। দিল্লির বাতাস হচ্ছে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে দূষিত। দিল্লিকে এখন বর্ণনা করা হয় 'গ্যাস চেম্বার' বলে। কিন্তু উত্তর ভারতে দিল্লিই একমাত্র নগরী নয় যেখানে বায়ু দূষণ এত মারাত্মক আকার নিয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত ছয়টি নগরীর পাঁচটিই উত্তর ভারতে। গত বছর গ্রীনপীসের এক সমীক্ষায় বলা হয়েছিল, বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত ৩০টি নগরীর ২২টিই ভারতে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যে মাত্রার দূষণকে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করে, ভারতের নগরীগুলোতে দূষণের মাত্র তার চেয়ে অনেকগুণ বেশি। বায়ু দূষণের কারণে বিশ্বে প্রতি বছর ৭০ লাখ মানুষ অপরিণত বয়সে মারা যায়। দিল্লি এখন যে ধোঁয়াশায় ঢেকে আছে তার কারণে সেখানে মানুষের মধ্যে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং আরও অনেক ধরণের ক্রনিক ফুসফুসের রোগ বেশি হারে হচ্ছে। আগ্রায় তাজমহল দেখতে যাওয়া পর্যটকদের বায়ু দূষণ থেকে রক্ষা পেতে মুখোশ পরতে হয়েছে উত্তর ভারতের এই বায়ু দূষণ, বিশেষ করে গঙ্গার সমতলভূমির এই দূষণের কারণে ভারতের প্রতিবেশি নেপাল এবং বাংলাদেশও ঝুঁকিতে আছে। কারণ পশ্চিম দিক থেকে আসা বাতাসে ভর করে এই ধোঁয়াশা আর ধূলিকণা সেখানে চলে যেতে পারে। কিন্তু ঠিক কী কারণে ভারতের বায়ু দূষণ এতটা মারাত্মক রূপ নিয়েছে। বিশেষ করে অক্টোবর-নভেম্বর��� এসে কেন এতটা অবনতি ঘটে পরিস্থিতির? ফসল পোড়ানো দিল্লি আর উত্তর ভারতে বায়ু দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্ণিত করা হচ্ছে বায়ু দূষণকে। ফসল কাটার পর মাঠে পড়ে থাকে যে ফসলের গোড়া, সেটি পরিস্কার করার সবচেয়ে সহজ উপায় আগুণে পুড়িয়ে দেয়া। কৃষকরা সেই পথই বেছে নেন। আরও পড়ুন: বায়ু দূষণে দিল্লি যেন একটা ‘গ্যাস চেম্বার’ দূষণে বিপর্যস্ত দিল্লিতে মানুষ কীভাবে বেঁচে আছে? বায়ু দূষণ যেভাবে আপনার বুদ্ধি কমাতে পারে ভারতের নির্মাণ শিল্প দ্রুত হারে বাড়ছে পশ্চিমা বাতাসে মাঠে পুড়তে থাকা আগুনের ধোঁয়া দিল্লির দিকে চলে আসে। সেখানে তৈরি করে মারাত্মক দূষণ। সরকার ফসলের ক্ষেতে আগুন দেয়ার এই কাজ বন্ধ করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু কোন ফল হয়নি। ভারতের অর্থনীতি এখনো মূলত কৃষি নির্ভর। এই ফসলের গোড়া পোড়ানোর কাজটি চলে এমন ব্যাপক মাত্রায়, বিশেষ করে উত্তর প্রদেশ এবং হরিয়ানায়। দিল্লির খুব কাছে এই দুটি প্রদেশ। যানবাহনের দূষণ যেসব উপায়ে ভারত সরকার এই দূষণ ঠেকানোর চেষ্টা করছে তার একটি হচ্ছে গাড়ির দূষণ কমানো। দিল্লি সরকারের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন নগরীর রাস্তায় চলে প্রায় ৩০ লাখ গাড়ি। কাজেই দূষণ কমাতে তারা রাস্তায় গাড়ি চালানোর ওপর নানা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। ভারতে ফসলের মাঠে খড় এবং নাড়া পোড়ানোকেও এই বায়ু দূষণের জন্য দায়ী করা হচ্ছে প্রাইভেট কারের ক্ষেত্রে নিয়ম করা হয়েছে, জোড় নম্বরের গাড়ি রাস্তায় নামবে একদিন, আর বেজোড় নম্বরের গাড়ি আরেকদিন। সরকারের দাবি, এর ফলে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। কিন্তু অন্য কিছু পরিসংখ্যানের দিকে নজর দেয়া যাকঃ ২০১৬ সালে ভারতের রাস্তায় চলতো প্রায় দুই কোটি গাড়ি। সেই সংখ্যা এখন আরও অনেক বেড়েছে। কাজেই গাড়ি থেকে নির্গত ধোঁয়ার কারণে বায়ু দূষণও বেড়েছে। ফসল পোড়ানোর দূষণের চেয়ে এই দূষণ কম নয়। ভারতের গাড়ির জ্বালানি হিসেবে ডিজেল বেশ জনপ্রিয়। সেটা একটা সমস্যা। সরকার আরও বেশি ইলেকট্রিক কার চালু করার চেষ্টা করছে, কিন্তু সে চেষ্টায় তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। ভারত সরকারের হিসেবে দেশটিতে ২০১৫ সালে বাস-ট্রাকের মতো ভারী যানবাহনের সংখ্যা ছিল এক কোটি নয় লাখ। এছাড়া আরও লাখ লাখ ডিজেল চালিত ট্যাক্সি এবং প্রাইভেট কার চলে। দিল্লির রাস্তায় প্রতিদিন চলে লাখ লাখ গাড়ি বি��্ঞান বিষয়ক সাময়িকী নেচার পরিচালিত সমীক্ষায় বলা হয়েছে, রাস্তায় ডিজেল চালিত যানবাহন থেকেই বিশ্বের বায়ু মণ্ডলে ২০ শতাংশ নাইট্রোজেন অক্সাইড ছড়াচ্ছে। নির্মাণ শিল্প প্রতিবার যখন দিল্লি নগরীতে বায়ু দূষণ নিয়ে হৈ চৈ শুরু হয়, সরকার এবং আদালত দিল্লি এবং এর আশে-পাশে সবধরণের নির্মান কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। অন্যান্য খবর: ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ জাহাঙ্গীরনগর: ভিসি কেন জামাত শিবির খুঁজছেন 'আমরা লুকিয়ে অন্যের যৌন জীবন দেখার চেষ্টা করছি' এর ফলে হাজার হাজার নির্মাণাধীন অ্যাপার্টমেন্ট ভবন, সরকারি ভবন, রাস্তা, শপিং মল আর ফ্লাই ওভারের নির্মাণ কাজ থমকে যায়। নির্মাণ কাজের ক্ষেত্রে ধুলোবালি নিয়ন্ত্রণের জন্য যেসব নিয়ম-কানুন মানার কথা, সেগুলো মানা হয় না বলেই এটা এত বড় একটা ইস্যু। এই ধুলো-বালির মধ্যে রাসায়নিকও থাকে, বাতাসে ভেসে তা ঢুকে পড়ে মানুষের শ্বাসযন্ত্রে, এবং সেখানে নানা সমস্য তৈরি করে। নির্মাণ খাতে ধূলোবালি কমাতে যেসব নিয়ম মানার কথা, সেগুলো মানা হয়না। ভারতের অর্থনীতি খুব দ্রুত বাড়ছে। চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় থাকার জন্য ভারতের মরিয়া চেষ্টায় নির্মাণ খাত বড় ভূমিকা রাখছে। দু'হাজার বাইশ সাল নাগাদ ভারতের নির্মাণ খাতের ব্যবসা দাঁড়াবে প্রায় ৭৩৮ বিলিয়ন ডলারে। ইস্পাত, রঙ এবং কাঁচ শিল্পে ভারত এখন বিশ্বে নেতৃস্থানীয় অবস্থায় আছে। এই মূহুর্তে ভারত জুড়ে কী পরিমাণ নির্মাণ কাজ চলছে তার কোন পরিসংখ্যান নেই। তবে ভারতের যে কোন ছোট শহরে গেলেই দেখা যায় সেখানে সব খাতেই বিরাট নির্মাণ যজ্ঞ চলছে। আবাসিক ভবন, বাণিজ্যিক ভবন থেকে শুরু করে নানা ধরণের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলছে। কাজেই ভারতের নগরীগুলোতে বায়ু দূষণের ক্ষেত্রে এই নির্মাণ খাতেরও রয়েছে বিরাট ভূমিকা। ভারতের রাজধানী দিল্লিতে জনস্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগের মুখে জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে- সেখানে কয়েকদিন স্কুল পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। লোকজনকে ঘর থাকতে বলা হয়েছে এবং হাসপাতালগুলোতে হাজার হাজার রোগী ভিড় করছে শ্বাসজনিত রোগে। +text: সম্প্রতি ভারতে কিশোরীদের ধর্ষণ এবং গর্ভবতী হয়ে পড়ার বেশ কয়েকটি খবর সামনে এসেছে ১৩ বছর বয়সী সে কিশোরী এখন ৩০ সপ্তাহের গর্ভবতী। ভারতের আইন অনুযায়ী ২০ সপ্তাহের গর্ভবতী পর্যন্ত গর্ভপাত করাতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে যদি মায়ের জীবন হুমকির মুখে থাকে তাহলে গর্ভপাতের অনুমতি দেয়া হয়। সে কিশোরীর বাবা-মা যখন তাকে স্থূল দেহের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায় তখন জানা যায় সে সন্তান সম্ভবা। তার বাবার বন্ধুর দ্বারা সে ধর্ষণের শিকার হয়েছিল বলে সে কিশোরীর অভিযোগ। মেয়ের গর্ভবতী হবার বিষয়টি তার বাবা-মা আগে থেকে বুঝতেই পারেননি। তার বাবা-মা প্রথমে ধারণা করেছিল তাদের মেয়ে হয়তো থাইরয়েড সমস্যায় আক্রান্ত। কারণ মেয়েটির ওজন বেড়ে যাচ্ছিল। মেয়েটির শারীরিক অবস্থা যাচাই-বাছাই করে ডাক্তার গর্ভপাতের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ ডাক্তার মনে করেছে তার গর্ভাবস্থা আরো দীর্ঘায়িত হলে মেয়েটির জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে। এর আগে ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা চণ্ডীগড়ে ১০ বছর বয়সী এক কিশোরীর ধর্ষণ এবং সন্তান জন্মদানের ঘটনা প্রকাশিত হবার কয়েক দিনের মাথায় ১৩ বছর বয়সী আরেক কিশোরী ধর্ষণ ও গর্ভবতী হবার খবর এসেছে। ১০ বছর বয়সী সে শিশুকে গর্ভপাতের অনুমতি দেয়নি আদালত। কারণ চিকিৎসকদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, গর্ভবতী হবার পর সে শিশুর ৩২ সপ্তাহ পার হয়েছিল। ফলে তাকে গর্ভপাত করানো হলে মৃত্যুর ঝুঁকি হতো বলে চিকিৎসকরা আদালতে প্রতিবেদন দেয়। সে পরিপ্রেক্ষিতে আদালত গর্ভপাতের অনুমতি দেয়নি। সম্প্রতি ভারতে ধর্ষণের পর গর্ভবতী হবার ঘটনায় গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে আদালতের অনুমতি প্রার্থনার বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। আরো পড়ুন: বিকাশ থেকে ১৩ লাখ টাকা উধাও হলো যেভাবে 'তাঁবু আর খাবার যারা দিছে, তাদের চিনি না আমি' বাঙালি সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে হুঁশিয়ার, বার্মার গণমাধ্যম ভারতের বিতর্কিত ধর্মগুরু রাম রহিমের ২০ বছরের সাজা ভারতের মুম্বাই শহরে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীর পিতা-মাতা তাদের কিশোরী কন্যার গর্ভপাতের অনুমতির জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। +text: মেডিটেশনের মাধ্যমে নিজের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করে নিশ্চিত করতে পারেন সুস্বাস্থ্য আপনি হয়তো ভাবছেন নিয়মিত যোগব্যায়াম করে, হাঁটাহাঁটি করে, খাদ্য তালিকার শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাবার নিয়ন্ত্রণ করে স্বাস্থ্য সুরক্ষার পথে চলবেন। কিন্তু যদি হঠাৎ বলা হয় যে, কষ্ট করে অতো কিছু করার দরকার নেই বরং একটা মাত্র কাজ করলেই চলবে। তাহলে আপনি কী করবেন? চট-জলদি নিশ্চয়ই সেই প্রক্রিয়াটিই অনুসরণ করব���ন? হ্যাঁ, আপনার জন্যই বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে বিবিসি এনেছে স্বাস্থ্য-সুরক্ষার সহজ তরিকা। নিজের মনের ইচ্ছের দিকে নজর দিন মানুষ সারাক্ষণ দেহের সুস্থতা নিয়ে ভাবে। আর এটি সহজও বটে। কিন্তু ব্রিটেনের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস ও এক্সারসাইজ বিষয়ক শিক্ষক ড. নেডাইন স্যামি বলেছেন, আমাদের নিজেদের মনের উপরে বিশেষ খেয়াল দেয়া দরকার। তার মতে, আত্ম-সচেতনতা বাড়িয়ে মনের উপরে আমাদের নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো সম্ভব। ড. স্যামি বলছিলেন, আত্ম-সচেতনতা এমন এক জিনিষ যা মানুষকে তার নিজের আবেগ, অনুভূতি ও ইচ্ছে-অনিচ্ছা অনেক নিবিড়ভাবে চিনতে সহায়তা করে। তার মতে, নিজের অনুভূতিকে চেনার মধ্য দিয়েই মানুষ নিজের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার দিকে সবচে' বেশি মনোযোগ দিতে পারে। নিজের সম্পর্কে ব্যক্তির ধারণা যত নির্ভুল ও গভীর হবে, ততই সে তার নিজের শক্তি ও দুর্বলতার দিকগুলো জানবে। এই জানার মাধ্যমেই নিজের দুর্বলতাগুলোকে কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়ে উঠে বলে মনে করেন ড. স্যামি। আরো পড়তে পারেন: বিরোধীদলীয় প্রার্থীরা প্রচারণায় দাঁড়াতেই পারেননি 'নির্বাচনে পুলিশও প্রতিপক্ষ': বিরোধীদলের শঙ্কা ভোট গ্রহণের দিনের নিরাপত্তা পরিকল্পনা কী? কুকুর পোষার কিছু স্বাস্থ্যকর দিব রয়েছে বলে মনে করেন চিকিৎসাবিদরা কুকুর পুষতে পারেন শারীরিকভাবে কর্মক্ষম থাকতে জিমে যাওয়া বা ভোরে দৌড়ানোর চেয়েও আপনাকে আরো বেশি কাজে কায়িক পরিশ্রমে ব্যস্ত করে রাখবে পোষা কুকুর। এবারিস্টউইথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজি বিভাগের শিক্ষক ড. রিস থেচার বলছিলেন, জিম হয়তো কারো কারো জন্য একটা ভালো সমাধান হতে পারে। কিন্তু তা সবার জন্য নয়। তাই এক্ষেত্রে মোক্ষম উপায় হতে পারে একটি কুকুর পোষা। কারণ কুকুরকে যদি দিনে দুইবার অন্তত ৩০ মিনিট কর হাঁটাতে হয় তখন আপনিও নিজে থেকেই হাঁটবেন। আর এভাবেই রোজকার হাঁটার ভেতর দিয়ে শরীর ও মনের সুরক্ষা হবে। সুস্বাস্থ্য অর্জন করতে হলে বিভিন্ন ধরণের উদ্ভিজ্জ খাদ্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা সপ্তাহে ৩০ পদের সবজি ও ফল-ফলাদি লন্ডন কিংস কলেজের একজন গবেষণা ফেলো ড. মেগান রসি বলছিলেন, শুধু বেশি করে সবজি ও ফল-ফলাদি খেলেই হবে না। এর মধ্যে বিভিন্ন জাতের ভিন্নতাও থাকা জরুরি দরকার। ড. রসির মতে, প্রতি সপ্তাহে সব পদ মিলেয়ে যদি ভিন্ন-ভিন্ন ৩০ পদের সবজি ও ফল-ফলাদি খাওয়��� যায় তবে তা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। আমাদের পাকস্থলীতে মাইক্রোবায়োম বলে একটি ব্যাকটেরিয়া আছে। এই ব্যাকটেরিয়া মানুষের সুস্বাস্থ্যের উপরে গভীরভাবে প্রভাব ফেলে। তাই এক্ষেত্রে যত বেশি সম্ভব লতা-পাতা ও উদ্ভিজ্জ সবজি খেতে পরামর্শ দিয়েছেন ড. রসি। বেশি করে হাসুন ড. জেমস গিল বলছেন, মানুষের উচিত সুখী হওয়ার চেষ্টা করা। এখন আপনার মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন আসতে পারে যে, সুখী হওয়া কি আর চাট্টিখানি কথা? নাকি চাইলেই সুখী হওয়া যায়? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশি হাসলে সুখী হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে এক্ষেত্রে ড. গিলের উত্তর হচ্ছে, সহজেই সুখী হওয়া যায়। সুখী থাকার সহজ উপায় হিসেবে বেশি করে হাসার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান হ্যা, পর্যাপ্ত ঘুমের কথাই বলা হয়েছে। একজন পরিণত বয়সের মানুষের রাতে গড়ে দৈনিক ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুম দরকার। কিন্তু একটানা যদি ঘুমের ঘাটতি চলতে থাকে তবে শরীরের উপরে এর খুব নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এক্সেটার ইউনিভার্সিটির স্পোর্ট এন্ড হেলথ সায়েন্স বিভাগের শিক্ষক ড. গেভিন বাকিংহাম বলেছেন, ঘুম কম হলে মানুষের কগনিটিভ ফাংশান বা নতুন জিনিস শেখার ক্ষেত্রে ক্ষতি হয়। ঘুমের ঘাটতির নেতিবাচক প্রভাবে এমনকি অনেক সময় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও ব্যক্তি দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগতে পরে বলে জানালেন ড. বাকিংহাম। তাই, দেহ ও মনের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পর্যাপ্ত ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। নতুন বছরে নিজের স্বাস্থ্যে দিকে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দেয়ার কথা ভাবছেন? +text: সাপটির ছবি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছেন বন কর্মকর্তারা বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বাচ্চা অজগর সাপটির মাথায় তিনটি চোখ ছিল, এবং প্রাকৃতিকভাবেই কোষ-বিভাজনের মাধ্যমে তৃতীয় চোখটি সৃষ্টি হয়েছে। ডারউইন শহরের ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে হাম্পটি ডু শহরের কাছে ১৫ ইঞ্চি লম্বা সাপটিকে দেখতে পান বন কর্মীরা। মাথায় তিনটি চোখ থাকার কারণে সাপটির কোন কিছু খেতে অসুবিধা হচ্ছিল। নর্দার্ন টেরিটরি পার্কস এ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিস এই 'আবিষ্কার'কে অনলাইনে অদ্ভূত বলে বর্ণনা করে। মার্চ মাসে সাপটি পাওয়া যাবার পর হলিউডের সিনেমার জনপ্রিয় চরিত্রের নামে এর নাম দেয়া হয়েছিল 'মন্টি পাইথন' - এবং কয়েক সপ্তাহ পরই এটি মারা যায়। কর্মকর্তারা বলছেন মাথার অস্বাভাবিক গঠনের জন্য সাপটির কিছু খেতে অ��ুবিধা হচ্ছিল বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: শক্তিশালী হচ্ছে ফণী, ৫-৬ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা বিএনপি সংসদে কতটা বিরোধী ভূমিকা রাখতে পারবে? ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯: জার্সি নিয়ে অন্তরালে কী ঘটেছিল? মোদীর বিরুদ্ধে 'প্রতিবাদের প্রতীক' যে ছাত্রনেতা বন্যপ্রাণী বিভাগ বলছে, সাপটির মাথার এক্স-রে করে দেখা গেছে যে সাপটির মাথার খুলি একটিই, এমন নয় যে ঘটনাক্রমে দুটি মাথা এক হয়ে গেছে। তার মাথার খুলিতে তিনটি চোখের সকেট বা গর্ত ছিল, এবং তিনটি চোখই কাজ করছিল। কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাপ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ব্রায়ান ফ্রাই বলেন, মিউটেশন বা কোষকলার বৃদ্ধি বিবর্তনের একটা স্বাভাবিক অংশ। "প্রতিটি শিশুর দেহেই কোন না কোন রকমের মিউটেশন হয়, এই সাপটির ক্ষেত্রে তা অস্বাভাবিক আকার নিয়েছে মাত্র।" অধ্যাপক ফ্রাই বলেন, "আমি এর আগে তিনটি চোখওয়ালা সাপ দেখিনি, তবে আমাদের ল্যাবরেটরিতে দুই মাথাওয়ালা একটি কোবরা পাইথন সাপ আছে।" "মানুষের মধ্যে যেমন জোড়া-লাগা শিশুর জন্ম হয়, ঠিক তেমনি সাপের মধ্যেও ভিন্ন ধরণের মিউটেশন হতে পারে" - বলেন তিনি। অধ্যাপক ফ্রাই বলেন, সাপটির তৃতীয় চোখটি হয়তো একটি যমজ সাপের অবশিষ্টাংশ যা এর দেহের সাথে মিশে গেছে। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: সাপ কেন মানুষের ঘরে এসে বাসা বাঁধে বাড়ির বাগানে পাওয়া গেল দু'মাথাওয়ালা সাপ সতেরো ফিট লম্বা অজগরের পেটে ৭৩টি ডিম এটাই কি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সাপ? উত্তর অস্ট্রেলিয়ায় একটি মহাসড়কের ওপর তিনটি চোখওয়ালা একটি সাপ পাওয়া গেছে। সেখানকার বন্যপ্রাণী কর্মকর্তারা অনলাইনে ছবিটি শেয়ার করেছেন। +text: কাটা চুল কখনো কখনো রং করে এভাবে সাজিয়ে রাখা হয় পার্লারে। শুধু দেশের বাজারেই এ দিয়ে ব্যবসা হচ্ছে তা নয়, আসছে শত-কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর হিসেবে গত অর্থবছরে বিভিন্ন দেশে এই চুল রপ্তানি করে আয় হয়েছে এক কোটি ৯০ লাখ ডলার অর্থাৎ ১৫০ কোটি টাকারও বেশি। ঢাকার ধানমন্ডীর একটি পুরনো পার্লার লি। সেখানে বেলা এগারোটার পর গিয়ে দেখা যায় যে ক'জন নারী সার্ভিস নিতে এলেন তারা বেশিরভাগই আসেন চুল কাটাতে। ক্লায়েন্টদের চুল কাটছেন কর্মীরা আর কিছুক্ষণ পরপর মেঝেতে জমা হওয়া কাটা চুল ঝাড়ু দিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন পরিচ্ছন্ন-কর্মীরা। কিন্তু এসব চুল যায় কোথায়? পার্লারে বা সেলুনে প্রতিদিন কাটা হচ্ছে বহু মানুষের চুল। আরও দেখুন: কফিনে ফিরে এলেন ইউএস-বাংলার ২৩ যাত্রী নিদাহাস ট্রফি: বাংলাদেশের ফাইনাল হারার ৪ কারণ লি বিউটি পার্লারের হিসাব বিভাগের পরিচালক বাদল শিমশাং জানান, "কাটা চুল কিছুদিন আগ পর্যন্ত বস্তায় ভরে কিনে নিয়ে যেত একদল লোক। তবে এখন আর ছোট চুলের চাহিদা নেই। বড় চুল কেউ কাটলে পার্লারের মেয়েরা সেগুলো সংরক্ষণ করেন এবং বিক্রি করেন।" আগে গ্রামের দিকে বাড়িতে বাড়িতে চুল সংগ্রহ করা হতো তবে এখন শহরের অলিতে-গলিতেও চুল খুঁজতে আসেন ফেরিওয়ালারা। কলাবাগান এলাকার একজন নারী বলেন, মেয়েদের ঝড়ে পড়া চুল নিয়ে যায় ফেরিওয়ালারা, তার বিনিময়ে মেলে অন্যকিছু। "ফেরিওয়ালা আইসা চুল চায়। তারপর ক্লিপ, সেফটিপিন, স্টিলের বাটি, চামচ এগুলা দেয়।" কাটা চুল দিয়ে পরচুলা বা উইগ বানানোর কাজ চলছে। তার সাথে কথা বলেই বেরিয়ে একজন ফেরিওয়ালাকে পাওয়া গেল, যে পুরনো কাগজ ও চুলের খোঁজ করছিল। কি ধরনের চুল নিতে চায় জানতে চাইলে সে বলে, মহিলাদের মাথার চুল। বাদ নেই ছেলেদের সেলুনও। যদিও সেখানে খুব একটা বড় চুল পাওয়া যায়না তারপরও সেখান থেকেও চুল সংগ্রহ করার জন্য ঘোরাফেরা করে ফেরিওয়ালারা, জানান বেশ কয়েকটি সেলুনের নরসুন্দর বা নাপিত। তবে বাংলাদেশে মূলত এ ধরনের চুলের বেশিরভাগ সংগ্রহ করা হয় পার্লার থেকে এবং বাড়ি বাড়ি ঘুরে ঘুরে। ঢাকার খিলগাঁওয়ের রেলগেট সংলগ্ন একটি বাড়িতে হেয়ারি নামে উইগ তৈরির কারখানা। এর উদ্যোক্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মতিউর রহমান ২২ বছর আগে শুরু করেছিলেন কাজটি। তখন দোকানে দোকানে গিয়ে তিনি ফ্যাশন ডলের মাথায় উইগ বসানোর জন্য সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতেন। আর এখন তার কাছে প্রতিদিনই কেউ না কেউ আসছেন উইগের খোঁজে। মতিউর রহমান বলেন, "এখন বিভিন্ন বয়সের মানুষেরা আসছেন নিজেদের মাথার উইগ বা পরচুলা তৈরির জন্য। কেউ চাকরির ইন্টারভিউ দেবেন বা বিয়ের পাত্রী দেখতে যাবেন, আবার কেউ টেলিভিশনে খবর পরবেন এমন অনেকে নিচ্ছেন উইগ। এছাড়া দেশের বাইরে থেকে তাদের কাছে অর্ডার আসছে।" কাটা চুল কেজি প্রতি তিন-চার কিংবা ৫০০০ টাকাতেও বেচা-কেনা চলছে। তবে চুলের আকার হতে হবে আট ইঞ্চি লম্বা। বর্তমানে কোনও কোনও কোম্পানি এই চুল আইল্যাশ বা চোখের পাপড়ি তৈরিতে ব্যবহার করছে। আর বিভিন্ন বাড়ি থেকে সংগ্রহ করা চুল প্রক্রিয়াজাত করা ছাড়াও চলে যাচ্ছে দেশের সীমানা ছাড়িয়ে। শত-কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আসছে ফেলনা এসব এসব চুল রপ্তানি করে। ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের বাইরে সবচেয়ে বেশি এ ধরনের চুল যাচ্ছে ভারতে। উইগ তৈরি ও বিক্রির প্রতিষ্ঠান হেয়ারির কর্ণধার মতিউর রহমান জানান, দেশ ও দেশের বাইরে থেকে বিভিন্ন বয়সের মানুষ তাদের কাছ থেকে উইগ নিচ্ছেন। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তালিকায় উইগ এবং হিউম্যান হেয়ারকে অপ্রচলিত পণ্য হিসেবে বলা হচ্ছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি জানায় গত অর্থবছরে এই পণ্য রপ্তানি করে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল অর্জিত হয়েছিল তার চেয়েও বেশি। ইপিবির পরিচালক আব্দুর রউফ বিবিসি বাংলাকে বলেন, রাজশাহী নওগাঁ, চুয়াডাঙ্গাসহ উত্তরাঞ্চলের অনেক জায়গাতে ফেলে দেয়া চুল হয়ে উঠেছে অনেকের রোজগারের উৎস। মূলত স্বাধীনতার পর থেকেই এই ব্যবসাটি চলে আসছিল। তবে তা সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে পড়তে থাকে ১৯৯৯-২০০০ সালের পর থেকে। আর রপ্তানি করে সবচেয়ে বেশি মুদ্রা এসেছে ২০১৫ -১৬ অর্থবছরে এক কোটি ১৪ লাখ মার্কিন ডলার। বর্তমানে চীনসহ কিছু দেশ বাংলাদেশে এসে এই খাতে বিনিয়োগও করছে। ফলে ছোট একটি খাত হলেও সেটি ধীরে ধীরে তা সম্ভাবনা জাগাচ্ছে বলেই মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশে গ্রাম থেকে শহরে মানুষের মাথার চুল বিশেষ করে মেয়েদের ঝরে পড়া চুল সংগ্রহ করার ঘটনা নতুন নয়। তার ওপর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিউটি পার্লারগুলোতে কিংবা সেলুনে প্রতিনিয়ত কাটা হচ্ছে বহু মানুষের চুল। আর এসব ফেলনা চুল দিয়েই আসছে টাকা। +text: কোনো যুদ্ধে এই প্রথম এ ধরনের বোমা নিক্ষেপ করা হলো বলা হচ্ছে, জিবিইউ-ফরটিথ্রি নামে বোমাটি যুক্তরাষ্ট্র প্রথমবারের মত ব্যবহার করলো। এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন আফগানিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রপতি হামিদ কারজাই। পেন্টাগন জানিয়েছে, পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী আফগানিস্তানের নাঙ্গারহার প্রদেশে আইএসের একটি গোপন ঘাটি ছিল এই হামলার লক্ষ্য। আরো পড়ুন: বাংলাদেশের বাস্তবতা মানতে হবে: ওবায়দুল কাদের অপু-শাকিব উপাখ্যান নিয়ে বুবলির বক্তব্য বলা হচ্ছে, আইএস জঙ্গিরা এখন আফগানিস্তানে ঘাটি বানাচ্ছে কোনো যুদ্ধে এই প্রথম এ ধরনের বোমা নিক্ষেপ করা হলো। জিবিইউ-ফরটিথ্রি নামের বোমাটিতে প্রায় দশ হাজার কেজি বিস্ফোরক ছিলো আর এটি ৩০ ফুটের বেশি লম্বা। হামলা চালানোর পর সন্তোষ প্রকা�� করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সিরিয়ায় কয়েকদিন আগে এক মার্কিন বিমান হামলায় ভুলক্রমে ১৮জন মানুষ নিহত হবার ঘটনা স্বীকার করে নেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আফগানিস্তানে এই হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। বলা হচ্ছে, গত সপ্তাহে নাঙ্গারহার প্রদেশে আইএস যোদ্ধাদের সঙ্গে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্পেশাল ফোর্সের একজন সদস্য নিহত হবার জবাবেই এই বোমা হামলা চালানো হল। এদিকে, আফগানিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রপতি হামিদ কারজাই এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানকে অস্ত্র পরীক্ষার ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে। আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেটের ঘাটি লক্ষ্য করে সবচেয়ে বড় বোমা নিক্ষেপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই বোমাকে বলা হয়, দ্য মাদার অব অল বম্বস অর্থাৎ পরমাণু অস্ত্রের বাইরে দেশটির সবচেয়ে বড় বোমা এটি। +text: ডুবে যাওয়া ট্রলারটি মঙ্গলবারই ডাঙায় টেনে তোলা হয়েছে। নৌবাহিনী জানাচ্ছে, গভীর রাতে তিনি সাঁতরে উপকূলে ভেসে আসেন। সেখান থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। এখন তাকে শুশ্রূষা দেয়া হচ্ছে বলে উদ্ধারকাজের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন। এই নিয়ে ওই ট্রলারটি উদ্ধার পাওয়া জীবিত যাত্রীদের সংখ্যা দাঁড়ালো ৭৩ জন। এদের অধিকাংশই নারী। যে পনেরো জন নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যেও ১১ জন নারী, বাকীরা শিশু। পুলিশের অভিযান: এই পাচার প্রক্রিয়ার সাথে যারা জড়িত তাদের ধরতে রাতভর অভিযান চালিয়েছে কক্সবাজারের পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বিবিসিকে বলেন, অভিযানে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা সবাই স্থানীয় বাঙালি এবং পাচারচক্রের মূল হোতা বলে পুলিশ মনে করছে। ট্রলারে থাকা বেশিরভাগ যাত্রীই ছিলেন নারী। এদের মধ্যে কেউ শরণার্থী শিবির থেকে রোহিঙ্গাদের পাচারের জন্য মালয়েশিয়া যেতে রাজি করেছে, কেউ তাদেরকে সংগ্রহ করেছে, কেউ রয়েছে শিবির থেকে ট্রলার পর্যন্ত নিয়ে গেছে এবং কেউ এই যাত্রাপথে তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছে। কয়েকজন নৌকার মাঝিও রয়েছে আটক হওয়াদের মধ্যে। ডুবে যাওয়া ট্রলারটি থেকে যাদেরকে উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের মধ্যেও দুইজনকে দালাল সন্দেহে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। উদ্ধারপ্রাপ্তদের সবাইকেই টেকনাফের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ��ন্দেহভাজন পাচারকারী ছাড়া বাকীদের শরণার্থী শিবিরে ফেরত পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ। আর নিহতদের মরদেহ পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে। ছোট ছোট দলে পাচার: ডুবে যাওয়া ট্রলারে যারা ছিলেন, তাদের বেশিরভাগই টেকনাফের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দা বলে জানাচ্ছেন সেন্টমার্টিনে নৌবাহিনীর অফিসার-ইন-চার্জ লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এস এম জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, উদ্ধারপ্রাপ্তদের সাথে কথাবার্তা বলে যা জানা যাচ্ছে তাতে, ছোট ছোট দলে ভাগ করে এদেরকে আলাদা আলাদাভাবে নিয়ে জড়ো করা হয়েছিল টেকনাফের নোয়াখালী নামক স্থানে। উদ্ধারপ্রাপ্তদের একাংশ ছোট ছোট নৌকায় করে রাতের আঁধারে তাদের সেখানে আনা হয়। একেকটি দলে ছিল ১৫ জন করে। তাদের লক্ষ্য ছিল মালয়েশিয়া যাওয়া। বেশিরভাগ উদ্ধারপ্রাপ্তরাই জানিয়েছেন, তাদের প্রত্যেকেরই মালয়েশিয়ায় আত্মীয়স্বজন আছেন। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেই যাচ্ছিলেন তারা। মালয়েশিয়ায় তাদের প্রাথমিক আশ্রয়দাতা হতেন এসব আত্মীয়স্বজন। ছোট নৌকায় করে নোয়াখালী নামক স্থানে আনার পর তাদের বড় ট্রলারটিতে তোলা হয়, যেটি শেষ পর্যন্ত পাওয়া যায় সেন্টমার্টিনে নিমজ্জিত অবস্থায়। এটি ছিলো একটি মাছধরা ট্রলার। ভেতরে ছিল প্রচুর পরিমাণে মাছ ধরা জাল। কেন মালয়েশিয়ায় গিয়ে বিয়ে করতে এতোটা আগ্রহী বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা নারীরা? মালয়েশিয়ায় কেন যাচ্ছিলেন, কীভাবে যাচ্ছিলেন? সেন্টমার্টিনে নৌবাহিনীর অফিসার ইন চার্জ লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এস এম জাহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি উদ্ধারপ্রাপ্তদের অনেকের সাথেই কথা বলেছেন এবং জানতে পেরেছেন, মালয়েশিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে এরা মাথাপিছু চল্লিশ হাজার করে টাকা দিয়েছিলেন দালালকে। তবে কক্সবাজারে পুলিশের এসপি এবিএম মাসুদ হোসেন বলছেন, এদের সবাইই যে অর্থ ব্যয় করে মালয়েশিয়া যাচ্ছিলেন সেটা বলা যাবে না। "খেয়াল করে দেখবেন, প্রচুর পরিমাণে তরুণী ছিল ট্রলারটিতে। এরা মূলত যাচ্ছিল তাদের হবু স্বামীদের কাছে"। মি. হোসেন বলেন, মালয়েশিয়ায় যেসব রোহিঙ্গা যুবক রয়েছেন, তারা অনেক সময় বিয়ের জন্য পাত্রী পান না। তারাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিজেরা ব্যয় বহন করে রোহিঙ্গা তরুণীদের নিয়ে যান বিয়ের জন্য। "ক্যাম্প থেকে এভাবে বিয়ের জন্য পাত্রী নিতে কন্যার পিতাকেই যৌতুক দেয় পাত্ররা', বলছিলেন মি. হোসেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নারীদের বিয়ের পাত্রী হিসেবে মালয়েশিয়া যাওয়ার আগ্রহের প্রবণতা নতুন নয়। গত বছর টেকনাফের ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যাওয়া শত শত নারীকে আটক করে আবার ক্যাম্পে ফিরিয়ে এনেছিল বিজিবি, যারা বিয়ে করার জন্য মালয়েশিয়া যাওয়ার উপক্রম করেছিলেন। ওইসময় একজন রোহিঙ্গা তরুণী বিবিসিকে বলেছিলেন, তারা গরীব হওয়ার কারণে ভাল থাকার এটাই সেরা উপায় বলে তিনি মনে করেন। তিনি নিজেও বিয়ে করার জন্য মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করার সময় ধরা পড়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, "যাবার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু কপালে নেই"। সেসময় বিজিবির কর্মকর্তারা বিবিসিকে বলেছিলেন, মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর হাতে অনেক তরুণীর স্বামী মারা যাওয়ার কারণে টেকনাফের রোহিঙ্গা শিবিরে পুরুষের চাইতে নারীর সংখ্যা বেশি। ফলে তাদের বিয়ের উপযুক্ত পাত্রের সংখ্যা কম থাকায় তারা মালয়েশিয়ার যেতে আগ্রহী থাকেন। ওদিকে মালয়েশিয়ায় যেহেতু বিয়ের উপযুক্ত রোহিঙ্গা পুরুষের জন্য পাত্রীর সঙ্কট আছে, তাই তাদের কাছেও টেকনাফের ক্যাম্পের তরুণীদের চাহিদা থাকে। এই দ্বিপাক্ষিক চাহিদা সৃষ্টি হওয়ার কারণে গত বছর থেকেই শরণার্থী শিবিরগুলোতে মানবপাচারকারী চক্রগুলোর কার্যক্রম ব্যাপকভাবে চলার বিষয়টি প্রকাশ পায়। আর সেন্টমার্টিনের ট্রলারডুবির ঘটনায় এই প্রবণতা অব্যহত থাকার বিষয়টি সামনে এলো। মঙ্গলবার পর্যন্ত নিখোঁজ ট্রলারটির যাত্রীদের সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্য। নিখোঁজের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি: নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড সদস্যরা এখনো নিখোঁজদের সন্ধানে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। লে. কমান্ডার ইসলাম মনে করেন, যাদেরকে এখনো পাওয়া যায়নি, তাদেরকে আর জীবিত পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। আর মৃতদেহও যেহেতু ভেসে উঠতে কিছুটা সময় লাগে এবং দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়তে পারে, ফলে সেগুলো কখন, কোথায় এবং কীভাবে পাওয়া যাবে তা নিয়ে সংশয় আছে। তবে ট্রলারটিতে ঠিক কতজন মানুষ ছিল তা নিয়ে এখনো সংশয় আছে। যদিও ১৩৮ জন মানুষ সেখানে ছিল বলে ব্যাপক প্রচার পেয়েছে কিন্তু নৌবাহিনীর লে. কমান্ডার ইসলাম বলছেন, ১৩৮ সংখ্যাটি প্রচার পাওয়ার কারণ হচ্ছে, উদ্ধারকৃতদের মধ্যে একেকজন একেক রকম সংখ্যা বলছিলেন, বলার সময়েও তাদের মধ্যে অনিশ্চয়তা কাজ করছিল। কিন্তু শুধুমাত্র একটি ���রুণী খুব জোরের সঙ্গেই ১৩৮ সংখ্যাটি উচ্চারণ করছিলেন। "সে বলছিলো, আমি জানি, ট্রলারে ১৩৮ জন মানুষ ছিল"। তার এই তথ্যকে আমলে নিয়ে ১৩৮ সংখ্যাটিকে ট্রলারের যাত্রীসংখ্যা ধরে নিখোঁজদের উদ্ধার তৎপরতা চালানো হচ্ছে এখন। যাদের জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে তাদেরকে এরই মধ্যে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিমজ্জিত ট্রলারটি মঙ্গলবারই টেনে তুলে আনা হয়। সেটি তন্ন তন্ন করে খোঁজার পর ভেতরে আর কোন মৃতদেহ নেই বলে জানাচ্ছেন কর্মকর্তারা। আরো খবর: কানাডায় বাংলাদেশিদের 'বেগমপাড়া' কি সত্যিই আছে? করোনাভাইরাসে হওয়া রোগের নতুন নাম 'কোভিড-১৯' খালেদা জিয়ার মুক্তি: এখন প্যারোলেও রাজি পরিবার করোনাভাইরাস: প্রধান সংক্রমণকারীরা কেন গুরুত্বপূর্ণ সেন্টমার্টিনে ডুবে যাওয়া রোহিঙ্গা বোঝাই ট্রলারটির আরো একজন জীবিত যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে গভীর রাতে। +text: কে-টু-১৮বি গ্রহের আবহাওয়া মণ্ডলের ৫০ শতাংশই পানি। এই আবিষ্কারের ফলে কেটু-১৮বি নামের গ্রহটিতে প্রাণের অস্তিত্ব আছে কিনা তা নিয়ে এখন বিজ্ঞানীরা নতুন করে কাজে নামবেন। দশ বছরের মধ্যে, নতুন মহাকাশ টেলিস্কোপ পরীক্ষা করে দেখতে পারবে কেটু-১৮বি গ্রহের আবহাওয়ামণ্ডলে প্রাণীদেহ থেকে উদ্ভুত গ্যাস উৎপাদিত হতে পারে কিনা। নেচার অ্যাস্ট্রনমি নামে একটি বিজ্ঞান সাময়িকীতে এই গবেষণার বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে। প্রধান বিজ্ঞানী, লণ্ডনের প্রফেসর জিওভান্না টিনেত্তি এটাকে এই আবিষ্কারকে ''বিস্ময়কর'' বলে ব্যাখ্যা করেছেন। "এই প্রথমবারের মত মহাকাশের যে এলাকা বসবাসযোগ্য সেই এলাকার মধ্যে এক গ্রহে আমরা পানির অস্তিত্ব খুঁজে পেলাম। মহাকাশের ওই স্তরের যে তাপমাত্রা তাতে প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব," বলেন। মহাকাশে বসবাসযোগ্য এলাকা এমন একটা অংশ যেখানকার তাপমাত্রা সেখানে কোন গ্রহের ভূপৃষ্ঠে পানিকে তরল অবস্থায় রাখার উপযুক্ত। নতুন এই গ্রহের আকার পৃথিবীর দ্বিগুণেরও বেশি। গ্রহের হিসাবে এটি "মহাপৃথিবী" বা "সুপার আর্থ" হিসাবে বিবেচিত। এখানকার তাপমাত্রা শূণ্য থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে অর্থাৎ যে তাপমাত্রায় পানি তরল অবস্থায় থাকতে পারে। কে-টু-১৮বি গ্রহের দূরত্ব পৃথিবী থেকে ১১১ আলোক বর্ষ অর্থাৎ প্রায় ৬৫০ মিলিয়ন মিলিয়ন মাইল দূরে। অনুসন্ধানী মহাকাশযান পাঠানোর জন্য যা খুবই দূরে। সামনে এখন একমাত্র পথ হল ২০২০-এর দশকে নতুন প্রযুক্তিসম্পন্ন মহাকাশ টেলিস্কোপ উদ্ভাবন করে তা সেখানে পাঠানো পর্যন্ত অপেক্ষা করা। লণ্ডনের ইউসিএল বিশ্ববিদ্যালয়ের ড: ইঙ্গো ওয়াল্ডম্যান বলছেন এই যান ওই গ্রহের আবহাওয়ামণ্ডল পরীক্ষা করে দেখবে সেখানে কোনরকম জীবিত প্রাণী গ্যাস সৃষ্টি করতে পারে কিনা। "বিজ্ঞানের জন্য এটাই অন্যতম সবচেয়ে বড় একটি প্রশ্ন এবং যা আমাদের সবসময় ভাবিয়েছে যে মহাজগতে আমরাই একমাত্র প্রাণী কিনা, " বলছেন ড: ওয়াল্ডম্যান। "আগামী দশ বছরের মধ্যে আমরা জানতে পারব মহাজগতের বায়ুমণ্ডলে প্রাণের কারণে অন্য কোনধরনের রাসায়নিক নির্গত হয় কিনা।" বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: চাঁদের উল্টোপিঠে নামলো চীনের নভোযান মঙ্গলগ্রহে তরল পানির 'হ্রদে'র সন্ধান সৌরজগতের বাইরে গ্রহের সন্ধানে নাসার নতুন মিশন এক্সোপ্ল্যানেট কি? এই আবিষ্কারের পেছনে যে দলটি কাজ করেছে তারা ২০১৬ থেকে ২০১৭র মধ্যে হাবল স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে আবিষ্কৃত গ্রহগুলো পর্যবেক্ষণ করেন। এই গ্রহগুলো যখন তাদের সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে তখন তাদের আলোয় কিধরনের পরিবর্তন হয় তা দেখে তারা এসব গ্রহের বায়ুমণ্ডলে রাসয়নিকের উপস্থিতি গবেষণা করে দেখেন। এগুলোর মধ্যে একমাত্র কে-টু-১৮বি গ্রহে পানির অস্তিত্বের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। পৃথিবীর বুকে প্রাণধারণের জন্য সবচেয়ে জরুরি উপাদান হল পানি। কম্প্যুটার মডেলিং-এর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন নতুন এই গ্রহের বায়ুমণ্ডলের ৫০ শতাংশই পানি। বৈজ্ঞানিক দলের একজন ড: সিয়ারাস বলছেন সৌরজগতের বাইরে বাসযোগ্য একটি গ্রহের বায়ুমণ্ডলে পানির অস্তিত্ব আবিষ্কার "রীতিমত উত্তেজনাকর"। তিনি বলেছেন, "এই আবিষ্কারের ফলে একটা মৌলিক প্রশ্ন এখন আমাদের সামনে- পৃথিবী কি একমাত্র গ্রহ যেখানে জীবন আছে?" দীর্ঘ পথ এভাবে এগোনর একটা অসুবিধা হল যে মহাকাশ বিজ্ঞানীরা একটা বিষয়ে একমত হতে পারেননি সেটা হল কোন্ গ্যাসের উপস্থিতি প্রাণের অস্তিত্বের ইঙ্গিত বহন করবে। এ বিষয়ে একমত হতে বিজ্ঞানীদের অনেক সময় লেগে যেতে পারে। একজন বিজ্ঞানী বলছেন কয়েকশ গ্রহে গ্যাসের রাসয়নিক উপাদান, কীভাবে এসব গ্যাস সৃষ্টি হয়ে এবং তারপর এই গ্যাস কীভঅবে বায়ুমণ্ডলে থাকে তা নিয়ে একটি সমীক্ষার প্রয়োজন। ''আমাদের সৌর মণ্ডলে পৃথিবীর অবস্থান অনন্য। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে রয়েছে অক্সিজেন, পানি এবং ওজোন। কিন্তু এখন যদি মহাজগতে অনেক দূরে অন্য কোন তারকার কক্ষপথে এমন কোন গ্রহের সন্ধান পাওয়া যায় যেখানে এই সবই রয়েছে তাহলেও সেগুলো ওই গ্রহে বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য কিনা সেটা কিছুটা সাবধানতার সঙ্গেই বলতে হবে, '' বলেন ওই বিজ্ঞানী। ''কাজেই মহাকাশের হাতে গোণা গুটিকয় গ্রহ নয়, বরং কয়েকশ গ্রহ থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।'' ইউরোপীয়ান মহাকাশ কেন্দ্র-এর ২০২৮এর মহাকাশ মিশন থেকে আরও তথ্য পাওয়া যাবে এডিনবারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রনমির ড: বেথ বিলর বলছেন দূরের এক তারার আশেপাশের এক গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব নিয়ে তথ্যপ্রমাণ শেষ পর্যন্ত পাওয়া যাবে বলে তার বিশ্বাস। ''এটা হলে মানব জাতির অস্তিত্ব নিয়ে একটা বড়ধরনের মতবদল ঘটবে,'' তিনি বিবিসি নিউজকে বলেন। ''সেটা যখন হবে, তখন এককথায় সেটা হবে যুগান্তকারী একটা মাইলফলক।'' অন্য গ্রহে আগেও পানি পাওয়া গিয়েছিল, কিন্তু প্রাণ থাকার জন্য সেসব গ্রহ হয় ছিল বেশি বড় নয় বেশি উষ্ণ। কে-টু-১৮বি গ্রহটি প্রথম আবিষ্কৃত হয় ২০১৫ সালে এবং এটি কয়েকশ মহা-পৃথিবীর একটি। যেখানে ভূখণ্ডের পরিমাণ পৃথিবী এবং নেপচুনের মাঝামাঝি। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশে অবনতি কেন লাদাখে ভারত ও চীনা ফৌজের মধ্যে সংঘর্ষ, হাতাহাতি থানায় এনে অভিযুক্ত ধর্ষকের সাথে বিয়ে: ওসি প্রত্যাহার একটি তারাকে প্রদক্ষিণকারী এক গ্রহ বসবাসযোগ্য বলে প্রথমবারের মত প্রমাণ পেয়েছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। এই গ্রহ যে কক্ষপথে ঘুরছে তাও বসবাসযোগ্য এলাকার মধ্যে বলে তারা বলছেন। +text: মিরসরাইয়ে বিস্ফোরণে দু'জন নিহত, র‍্যাব বলছে জঙ্গি র‍্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান ঘটনাস্থল থেকে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল চট্টগ্রাম আদালত ভবনে নাশকতার পরিকল্পনা করছিল এই সন্দেহভাজন জঙ্গিরা। এ পর্যন্ত দুইটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যারা বোমা বিস্ফারণে নিহত হয়েছে বলে র‍্যাব কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন। ওই বাড়িটি থেকে ৫টি হ্যান্ড গ্রেনেড, একটি একে-২২ রাইফেল, তিনটি পিস্তল এবং বেশ কিছু পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। সর্বশেষ দফা প্রেস ব্রিফিংয়ের ঘণ্টা খানেক আগে মি. খান বলেছিলেন ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌধুরী ম্যানসনে চারজন জঙ্গি রয়েছে। তারা ��েএমবি'র সদস্য বলে তিনি দাবী করেন। এরমধ্যে একজন নারী রয়েছে বলেও তখন তিনি জানান। শুক্রবার খুব ভোর থেকে অভিযান শুরু হয়। ওই অভিযানের সময় গোলাগুলি এবং বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয় সাংবাদিকরা জানাচ্ছেন। সাংবাদিকরা বলছেন, গত ২৯শে সেপ্টেম্বর কয়েকজন ব্যক্তি চৌধুরী ম্যানসন নামের বাড়িটি ভাড়া নেয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে এক তলা সবুজ এই বাড়িটির টিনের চালা রয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাড়ির মালিক মাজহার চৌধুরী এবং ভাড়াটিয়াদের পরিচয়পত্র না রাখার কারণে তাকে এবং কেয়ারটেকার সহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। প্রায় এক বছর আগে চট্টগ্রামে মিরসরাইয়ে একটি এবং কাছের এলাকা সীতাকুণ্ডে জঙ্গি বিরোধী অভিযান চালানো হয়েছিল। আরো পড়ুন: নির্বাচনকালীন সরকার বিতর্কে বিএনপি বিশ্বব্যাপী সাইবার হামলার একের পর এক অভিযোগ আসছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে তড়িঘড়ি করে ৭ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে প্রত্যর্পণ বাংলাদেশের চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালানোর সময় বিস্ফোরণে অন্তত দু'জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের বিশেষ বাহিনী র‍্যাব। +text: উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি ইওং-হো। পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি ইওং-হো জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞার কারণে উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অনাস্থা আরো গভীর হচ্ছে। উত্তর কোরিয়া বারবারই জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহবান জানিয়ে আসছে তাদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য। দেশটির পরমাণু কর্মসূচির প্রতি সমর্থন রয়েছে চীন ও রাশিয়ার। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পরমানু অস্ত্র ধ্বংস না করা পর্যন্ত উত্তর কোরিয়ার ওপর তাদের নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের একদিন পরই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-আনের সাথে তার সম্পর্কের ওপর নতুন করে আলোকপাত করেছেন। মি. ট্রাম্প বলেছেন, তারা দু'জন দু'জনের প্রেমে পড়েছেন। ওয়েস্ট ভার্জিনিয়াতে রিপাবলিকান দলের নির্বাচনী প্রচারণার সময় এক সমাবেশে তিনি বলেছেন, মি. কিম তাকে সুন্দর সুন্দর চিঠি লিখেছেন এবং তারপর থেকেই তারা প্রেমে পড়ে গেছেন। তিনি এও বলছেন যে, তার সমালোচকরা তাদের নতু�� এই সম্পর্কের সমালোচনা করতেও ছাড়বে না। "তারা এখন বলবে যে এই সম্পর্ক বীভৎস এবং প্রেসিডেন্টসুলভ নয়," বলেন তিনি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে উত্তর কোরিয়ার যুদ্ধ লেগে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিল। কিন্তু তার কূটনৈতিক প্রচেষ্টার কারণে সেটা এড়ানো সম্ভব হয়েছে। তিনি এও দাবি করেছেন যে উত্তর কোরিয়া এখন তাদের পরমানু ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও মি কিমের মধ্যে গত জুন মাসে সিঙ্গাপুরে ঐতিহাসিক এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই বৈঠকে মি. কিম তার পরমাণু কর্মসূচি পরিহারের অঙ্গীকার করেছিলেন। কিন্তু তারপরে এবিষয়ে কতোটুকু অগ্রগতি হয়েছে সেটা এখনও খুব একটা পরিষ্কার নয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-আনের বৈঠক। সিঙ্গাপুরের বৈঠকের পর কী হয়েছে? সিঙ্গাপুরের ওই বৈঠকে উত্তর কোরিয়াকে পরমানু অস্ত্রমুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেজন্যে কোন সময়সীমার কথা উল্লেখ করা হয়নি। কীভাবে পরমানুমুক্ত করা হবে তারও বিস্তারিত কোন বিবরণ নেই। কে বা কারা এই প্রক্রিয়ার ওপর নজর রাখবে সেবিষয়েও কিছু বলা হয়নি। বৈঠকের পর গত অগাস্ট মাসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন যে উত্তর কোরিয়ার ঘনিষ্ট মিত্র চীন এই প্রক্রিয়াকে খাটো করার চেষ্টা করছে। চীনের সাথে বাণিজ্যিক বিরোধের জেরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বেইজিং-এর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছিলেন। আরো পড়তে পারেন: 'গ্রামের সবাই বলছে তাদেরকে সাপে কামড়েছে' সমাবেশে যে সাত দফা দাবি জানাবে বিএনপি বোমা মেরে চাঁদ কেন উড়িয়ে দিতে চেয়েছিল নাসা Kim Jong-un and I "fell in love" - Trump on the North Korean leader at a rally in West Virginia সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন তার দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের নিয়ে তিনদিনের এক সফরে উত্তর কোরিয়া গিয়েছিলেন। গত এক দশকে দক্ষিণের কোন নেতার উত্তর কোরিয়ার রাজধানীতে এটাই ছিল প্রথম সফর। সফরের পর মি. মুন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, চেয়ারম্যান কিম যে তার অঙ্গীকার পূরণের ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ সেটা তিনি নিশ্চিত। এছাড়াও মি. কিম তাকে জানিয়েছেন যে তিনি আবারও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে বৈঠক করতে আগ্রহী। মি. কিম আরো অঙ্গীকার করেছেন যে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের স্থান তিনি ���্বংস করে দেবেন। তিনি আরো বলেছেন, আমেরিকা যদি একই ধরনের কিছু পদক্ষেপ নেয়, তিনি তখন পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার প্রধান স্থানটিকেও ধ্বংস করে দিতে প্রস্তুত। মি. ট্রাম্পও বলেছেন, অদূর ভবিষ্যতে মি. কিমের সাথে তার দ্বিতীয় বৈঠকটি হতে যাচ্ছে বলে তিনিও আশা করছেন। উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুঁশিয়ার করে বলেছেন, তাদের দেশের উপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকলে তারা কিছুতেই তাদের পারমানবিক অস্ত্র ধ্বংস করবেন না। +text: এর আগে বিভিন্ন সেশনে মি: ট্রাম্পের সহযোগী হিসেবে ছিলেন ইভানকা ট্রাম্প। সেসময় মি: ট্রাম্প ইন্দোনেশিয়ার নেতার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেছিলেন। আর তাঁর পরিবর্তে ইভানকা বসেন ওই বৈঠকে। বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, তিনি এ ধরনের ঘটনা আগে কখনো ঘটেছে বলে মনে করতে পারছেন না। যদিও ইভানকা ট্রাম্প তাঁর পিতার উপদেষ্টা পদে আছেন কিন্তু সাধারণত প্রেসিডেন্টের অনুপস্থিতিকে তাঁর জায়গায় বসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা অন্য কোন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। এই ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমগুলোতে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বৈঠক শুরু হবার কিছু সময় পরেই মি: ট্রাম্প ফিরে আসেন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেজা মে ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মাঝে থাকা নিজের আসনটি গ্রহণ করেন। এই বৈঠকে যখন মি: ট্রাম্প অনুপস্থিত ছিলেন তখন আফ্রিকান অভিবাসী ও স্বাস্থ্য বিষয়ে আলোচনা চলছিল এবং এ বিষয়ে নেতাদের আলোচনায় ইভানকা ট্রাম্প কোনো ভূমিকা রাখেননি। আলোচনায় উপস্থিত থাকা রাশিয়ার এক কর্মকর্তা ট্রাম্পের আসনে বসা ইভানকার ছবি টুইটারে পোস্ট করেছিলেন। পরে অবশ্য তিনি ছবিটি সরিয়ে নেন। সামাজিক মাধ্যমে অনেকে সমালোচনা করেছেন এই বলে যে মিস ইভানকা নির্বাচিত কেউ নন, তাঁর মতো এক ফ্যাশন ব্র্যান্ডের মালিক এমন উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক বৈঠকে কোন যোগ্যতায় বসে এই প্রশ্ন তুলে অনেকে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন। আরো পড়তে পারেন: জার্মানিতে জি-২০ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন শনিবার নেতাদের একটি বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। +text: কুমিল্লার মুরাদনগরে হামলার শিকার একটি বাড়ি দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিবিসির নির্দিষ্ট এক প্রশ্নের মুখে মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানান, 'এই ঘটনাটির ব্যাপারে ঢাকায় আমাদের হাই কমিশন ও উপ-দূতাব��স বাংলাদেশের স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলছে। তাদের কাছে বিষয়টি আমরা উত্থাপন করেছি।' অনুরাগ শ্রীবাস্তব আরও বলেন, 'আমাদের এটাও জানানো হয়েছে যে বাংলাদেশ সরকার কুমিল্লার ওই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।' 'কীভাবে সেখানে সহিংসতার সূচনা হল, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো সেটা তদন্ত করে দেখছে। সেখানে যাতে এই ধরনের কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না-ঘটতে পারে, সেটা ঠেকানোর জন্যও পুলিশ ও প্রশাসন সতর্ক রয়েছে।' এর আগে হিন্দু পরিবারের ওপর হামলার ঘটনা সামনে আসার পর ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস বিষয়টি নিয়ে ঢাকার সঙ্গে কথা বলতে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছিল। ভারতের পার্লামেন্টে কংগ্রেসের দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী বিবিসিকে বলেছেন, অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে এই ধরনের ঘটনার প্রভাব সীমান্তের এপারেও পড়তে পারে। সেজন্য তারা চান বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের কাছে উত্থাপন করা হোক। বাংলাদেশ কী বলছে? ভারতের প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানা নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তবে এই প্রসঙ্গে তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ''এই ঘটনা আসলে একটা দুর্ঘটনা, সেটা ওই দেশেও হয়। কোন সরকারই চায় না যে এগুলো হোক। আমাদের দেশ সম্প্রীতির দেশ। আমাদের দেশে মাইনরিটিরা যত সুখে আছে, অন্য অনেক দেশে সে অবস্থা নেই।'' ''এরকম একটা দুর্ঘটনা ঘটলে সাথে সাথে আমরা তার বিচারের ব্যবস্থা করি, সেজন্য আমাদের কাছে তদবির করার দরকার নেই বা পরামর্শের দরকার নেই। আমরা নিজে থেকেই এ ব্যাপারে অ্যালার্ট। সম্প্রীতি কোথাও নষ্ট হোক, এটা আমরা চাই না, এটা আমাদের একটা প্রায়োরিটি ইস্যু।'' বলছেন মি. মোমেন। তিনি বরং অন্যদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন, যাতে তাদের নিজের ঘরে এরকমের দুর্ঘটনা না হয়। আরো পড়ুন: কুমিল্লায় হিন্দু নির্যাতনের ঘটনায় ভারতে যে প্রতিক্রিয়া হয়েছে ধর্ম অবমাননার গুজবে সহিংসতা, সরকার পরিস্থিতিকে যেভাবে দেখছে মুরাদনগরে হিন্দু বাড়িঘরে হামলা: ধর্ম অবমাননা নাকি রাজনীতি? ধর্ম অবমাননার গুজব, বিচারের দাবিতে রাস্তায় নামবে সংখ্যালঘুদের সংগঠন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পহেলা নভেম্বর বাংলাদেশের কুমিল্লার মুরাদনগরে ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার গুজব তুলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আড়াই'শ মানুষের বিরুদ্ধে বাঙ্গরা বাজার থানায় একটি মামলাও করা হয়েছে। হামলার প্রতিবাদে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সংগঠন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এক সংবাদ সম্মেলন করে ঢাকাসহ দেশের জেলা-উপজেলায় প্রধান রাস্তায় দুই ঘণ্টার অবস্থান এবং প্রতিবাদ মিছিলের কর্মসূচিও পালন করেছে। বাংলাদেশে ধর্ম অবমাননার গুজবে কয়েকদিন ধরে যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেক্ষেত্রে সংখ্যালঘুদের টার্গেট করা হচ্ছে বলে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ অভিযোগ করেছে। মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান তালুকদার বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, এখন পর্যন্ত যতটুকু তথ্য পাওয়া গেছে তাতে ধর্ম অবমাননার বিষয় নেই বরং স্থানীয় রাজনীতির উপাদান আছে। তবে পূর্নাঙ্গ তদন্ত শেষেই বলা যাবে কি হয়েছিলো বা কেনো হয়েছিলো। মি. তালুকদার জানান, রবিবারের ওই ঘটনার সাথে জড়িত পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে এবং পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে। কী ঘটেছিল রোববার: ঘটনাস্থল মুরাদনগর উপজেলার পূর্ব ধইর ইউনিয়নের কোরবানপুর গ্রামে সোমবার গিয়েছিলেন কুমিল্লার সাংবাদিক গাজীউল হক সোহাগ। মি. হক বলছেন, ওই গ্রামের অধিবাসী কিশোর দেবনাথ কিষান, যিনি ফ্রান্সে বসবাস করছেন, তিনি গত শনিবার দুপুরে ফেসবুকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে সমর্থন করে স্ট্যাটাস দেন। ওই স্ট্যাটাসে একমত পোষণ করে মন্তব্য করেন তার প্রতিবেশী শংকর ও অনিল নামে দু ব্যক্তি। এতে আপত্তি জানিয়ে স্থানীয়রা সেখানে বিক্ষোভ মিছিল করে। রাতেই শংকর ও অনিলকে আটক করে পুলিশ। পরদিন রোববার তাদের আদালতে পাঠানো হয়। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: যে পাঁচটি কারণে নির্বাচনে জিতেছেন জো বাইডেন যে আসামির কারামুক্তির শর্ত মা ও সন্তানদের দেখভাল করা জো বাইডেন জয়ী, কিন্তু এখন কী হবে? জো বাইডেন: আমেরিকার নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের রাজনৈতিক জীবন ভারতের রিপাবলিক টিভিতে বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের খবর পরিস্থিতি শান্ত করতে মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গুরা থানার ওসি রোববার বিকেলে কোরবানপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সম্প্রীতি সমাবেশ ডাকেন, যেখানে স্থানীয় ইসলাম ধর্মের নেতৃস্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন। সেই সমাবেশ থেকেই একদল লোক উঠে গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বনকুমার শিবের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। আরেকটি দল শংকর দেবনাথের বাড়িতে গিয়ে হামলা ও মন্দিরে আক্রমণ করে। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন গিয়ে চেয়ারম্যানের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। গাজীউল হক বলছেন, রবিবারের হামলায় ৮/১০ টি বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়। পরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পক্ষ থেকে তিনটি মামলা হয়, যেখানে ২৯৬ জনকে আসামী করা হয়েছে। বাংলাদেশে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগরে হিন্দুদের ওপর হামলা ও হিন্দু মন্দিরে ভাঙচুরের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, তারা এই বিষয়ে বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছে। +text: ভারতের সীমান্তের কাছে তুষারপাতে আটকে পড়ে না খেয়ে মারা পড়েছে কমপক্ষে ৩০০ ইয়াক ভারতের সরকারি কর্মকর্তা রাজ যাদব বলেন, শুক্রবার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিমে মরদেহগুলো খুঁজে পান তারা। গত ডিসেম্বর থেকে আটকে ছিলো ইয়াক বা চমরি গাইগুলো। কর্তৃপক্ষ হেলিকপ্টারে করে খাবার দেয়ার চেষ্টা করলেও খারাপ আবহাওয়ার কারণে তাদেরকে সরে আসতে হয়। আরো পড়ুন: ইয়েতির পায়ের ছাপ: ভারতীয় আর্মির দাবি নিয়ে বিদ্রুপ ভারতের সিকিম বিমানবন্দর: বিশ্বে সবচেয়ে সুন্দর? ভারতের সিকিম কিভাবে অর্গানিক রাজ্য হলো? হাজার হাজার বছর ধরে ওই এলাকায় বাস করছে চমরি গাই। দুধ ও মাংসের চাহিদা পূরণ ছাড়াও মালামাল বহনের কাজে ব্যবহার করা হয় এগুলো। "৫দিন আগে ওই এলাকায় যাওয়ার সরু রাস্তাগুলো পরিষ্কার করা হয়। পরে আমাদের একটি দল সেখানে গিয়ে এ করুণ অবস্থার খোঁজ পায়।" বলেন মিস্টার যাদব। রাজ্যটির উত্তরে মুকুথাং উপত্যকায় গিয়ে মৃত ইয়াকগুলো পায় কর্তৃপক্ষ। যদিও প্রতিবছরই ১০ থেকে ১৫টি ইয়াক মারা যায়, তবে এ বছর সংখ্যাটি রেকর্ডকৃত অন্য যেকোন বছরের চেয়ে বেশি। মিস্টার যাদব বলেন, "এখনো ওই এলাকায় আটকে থাকা ৫০টি চমরি গাই উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আর এগুলো খুব জরুরী ভিত্তিতেই করতে হবে।" প্রতিটি মৃত ইয়াকের জন্য এর মালিককে ৩০ হাজার রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। একটি পরিবারে সর্বোচ্চ তিনটি ইয়াকের ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা জানানো হয়। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: যে ৫২টি পণ্য সরিয়ে নিতে বলেছে হাইকোর্ট 'আল্লাহ আমাদের বাঁচাতে জেলেদের পাঠিয়েছিল' আইপিএল ২০১৯: কে এগিয়ে? মুম্বাই নাকি চেন্নাই 'পৃথিবীর সবচেয়ে দক্ষ অলরা���ন্ডার আমাদের মায়েরাই' চীনের সাথে ভারতের সীমান্তের কাছে তুষারপাতে আটকে পড়ে না খেয়ে মারা পড়েছে কমপক্ষে ৩০০ ইয়াক। +text: ২১শে অগাস্টে গ্রেনেড হামলার পর বঙ্গবন্ধু অ্যাভেনিউতে পরে ছিল জুতা, স্যন্ডেল - এমনকি অবিস্ফোরিত গ্রেনেড ২১শে অগাস্ট-এর সে সমাবেশ শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন - এ কথা আগেই প্রচার করা হয়েছিল। শেখ হাসিনা সে সমাবেশে থাকবেন বলেই দলের অধিকাংশ সিনিয়র নেতারাও সমাবেশ উপস্থিত হয়েছিলেন। একই সাথে দলের কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতিও ছিল বেশি। সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা সবাইকে একদিকে যেমন চমকে দিয়েছিল, তেমনি জনমনে ব্যাপক আতঙ্কও তৈরি হয়েছিল। ঘটনার পরপরই দেশর বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ করেন। শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের অন্য সিনিয়র নেতাদের অবস্থা জানার জন্য উদগ্রীব ছিলেন দলটির প্রত্যন্ত অঞ্চলের নেতা-কর্মীরা। ঘটনার পরদিনই দেশের চট্টগ্রামে চট্টগ্রাম এবং সিলেটসহ বিভিন্ন জায়গায় হরতালের ডাক দেয় স্থানীয় আওয়ামী। হরতালের সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর নিয়ন্ত্রণ হারানোর আশংকা ভর করেছিল তৎকালীন বিএনপি সরকারের উপর। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: গ্রেনেড হামলা: যেভাবে রক্ষা পেয়েছিলেন শেখ হাসিনা গ্রেনেড হামলা মামলা: যেভাবে ঘটনার শুরু থেকে শেষ গ্রেনেড হামলা: বিএনপির প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল? আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল বিএনপি সরকার। ২৪ এবং ২৫শে অগাস্ট দেশজুড়ে হরতালের ডাক দেয় আওয়ামী লীগ। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সাথে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘাত চলতে থাকে। তখন টানা দিনের হরতাল এতোটাই জোরালো ছিল যে তৎকালীন বিএনপি সরকার বিষয়টি নিয়ে কিছুটা চিন্তিত হয়ে উঠে। দৈনিক প্রথম আলো তখন সংবাদ শিরোনাম করেছিল, " স্বতঃস্ফূর্ত হরতালে অচল সারা দেশ।" আওয়ামী লীগের এই হরতালে সমর্থন দেয় গণফোরাম, জাসদ এবং তাদের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলো। পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সারা দেশে 'রেড অ্যালার্ট' জারি করে। স্পর্শকাতর এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য দেশের সকল জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারের বিশেষ বার্তা দেয়া হয়। আইন-শ��ঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার জন্য প্রয়োজনে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে সেনাবাহিনী মোতায়েনের চিন্তা-ভাবনা ছিল তৎকালীন সরকারের। গ্রেনেড হামলার পর বেশ কিছুদিন যাবত অস্থির হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। গ্রেনেড হামলার কয়েকদিন পরে বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানদের সাথে বৈঠক করেছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। গ্রেনেড হামলা মামলায় ২০১৮ সালে নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে লুৎফুজ্জামান বাবরকে। গ্রেনেড হামলার পর একদিকে যখন দেশের ভেতরে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মহলে প্রবল চাপের মুখে পড়ে তৎকালীন বিএনপি সরকার। বিএনপির সরকারের সময় একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা নাম প্রকাশ রা করার শর্তে বিবিসি বাংলাকে বলেন, গ্রেনেড হামলায় দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য ভারত এবং পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে থেকে। বিশেষ করে তখন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঠিক তিন মাস আগে সিলেট সফররত ব্রিটিশ হাইকমিশনার মি: চৌধুরীর উপর গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। এদিকে দেশের ভেতরে প্রবল অস্থিরতা এবং অন্যদিকে আন্তর্জাতিক চাপ - এই দুই পরিস্থিতি সামাল দেবার জন্য শেখ হাসিনার সাথে সংলাপে বসার আগ্রহ প্রকাশ করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। কিন্তু শেখ হাসিনার দিক থেকে কোন আগ্রহ দেখানো হয়নি। শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে দৈনিক প্রথম আলো লিখেছিল, "আসলে খালেদা জিয়াকে রক্ষার জন্য একটি বিশেষ মহল মাঠে নেমেছে। যারা সমঝোতার কথা বলবে, আমি বলব তারাই খুনি।" খালেদা জিয়া যখন একদিকে সংলাপের মনোভাব করছিলেন, তখন বিএনপির কোন কোন নেতা গ্রেনেড হামলার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে নানা বক্তব্য দেন। গ্রেনেড হামলার এক সপ্তাহ পরে আওয়ামী লীগসহ ১১ দল এবং জাসদ এ সভায় এক দফা আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের এই এক দফা ছিল - সরকার পতনের আন্দোলন গড়ে তোলা। এতো রক্ত, এতো লাশ আমি আর কখনো দেখিনি। ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দলে ছিল, তখন বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে প্রায়ই সমাবেশ করতো আওয়ামী লীগ। তবে সব সমাবেশ দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকতেন না। +text: ভারত সিরিজে রিয়াদ এভাবে আউট হন যদিও নির্বাচকরা 'বাদ' শব্দটি উচ্চারণ করছেন না, কিন্তু একই সময়ে চলমান বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে তিনি আছেন, তার মানে তাকে বিশ্রাম দেয়া হয়নি। সর্বশেষ আফগানিস্তানের সাথে একটি, ভারতের সাথে দুইটি এবং এরপর পাকিস্তানের সাথে একটি-এই টানা চারটি টেস্ট বড় ব্যবধানে হারের পর বাংলাদেশের টেস্ট দলে পরিবর্তন আনা হয়েছে। অধিনায়ক মুমিনুল হকই আছেন, মুশফিকুর রহিম ফিরেছেন যথারীতি, রিয়াদ বাদ পড়েছেন। দলে ঢুকেছেন তাসকিন আহমেদ, মেহেদি হাসান মিরাজ এবং মুস্তাফিজুর রহমান। এখনো টেস্ট খেলেননি এমন ক্রিকেটারও আছেন দুইজন- ইয়াসির আলি এবং হাসান মাহমুদ। ধারণা করা হচ্ছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টের পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে পাকিস্তানে পাঠানো হবে দ্বিতীয় টেস্টের দল। রিয়াদ প্রসঙ্গে নির্বাচক কী বলছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বলেন, "একজন সিনিয়র ক্রিকেটার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, একটা বিশ্রামের প্রয়োজন আছে এজন্যই এই সিদ্ধান্ত।" যদিও এর আগে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ঘরের মাটিতেই জিম্বাবুয়ের সাথে একটি টেস্টে ১৫১ রানে হেরে যায়। যেটি গত ছয় বছরে জিম্বাবুয়ের একমাত্র টেস্ট জয়। জিম্বাবুয়ের সাথে যেহেতু ঘরের মাটিতে খেলছে বাংলাদেশ সেজন্য এটাকে 'ক্রিকেটার ঝালাইয়ের' সুযোগ হিসেবে দেখছেন মি: নান্নু। কিন্তু পরে টেস্ট তাকে দলে নেয়া হবে কি না সেটা এখনই বলতে চাচ্ছেন না মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। ক্রিকেট নিয়ে বিবিসি বাংলার কিছু খবর: বাংলাদেশ ক্রিকেটে 'পঞ্চপাণ্ডব' অধ্যায় কি শেষের দিকে? ক্রিকেট: সাকিব-মুশফিক কেন অধিনায়ক হতে চান না ক্রিকেট বিশ্বকাপ: বড় মঞ্চের নায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ? রিয়াদ প্রসঙ্গে বিশ্লেষণ বাংলাদেশের একজন ক্রিকেট সাংবাদিক ও বিশ্লেষক সাজ্জাদ খান বলেন, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে বাদ দেয়ার পরিকল্পনা মূলত বাংলাদেশের সাবেক কোচ হাথুরুসিংহের। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের ১০০তম টেস্টে রিয়াদকে তিনি একাদশ থেকে সরিয়ে নেন। মি. সাজ্জাদ বলছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ধীরে ধীরে সিনিয়র ক্রিকেটারদের সরিয়ে দেয়ার একটা প্র্রক্রিয়া চালু করছে, তারই একটা অংশ এটা। "মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ টেস্টে ৩১ গড়ে ব্যাট করেছেন, যেখানে ওয়ানডে ক্রিকেটে তার গড় ৩৩, বোলিংয়েও খুব বেশি দেয়ার নেই রিয়াদের।" "মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ থাকলে মিডল অর্ডারটা খানিকটা লম���বা হয়ে যায়, আবার বলার মতো ব্যাটিংও তিনি করতে পারেননি যেটা নির্বাচকরা বিবেচনা করতে পারতেন।" সাজ্জাদ খান ব্যখ্যা করেন, "যেহেতু উদ্বোধন করতে নামেন তামিম ইকবাল ও সাইফ হাসান, ওয়ান ডাউনে নামছেন নাজমুল হোসেন শান্ত যিনি পাকিস্তানে টেস্টে অন্য ব্যাটসম্যানদের চেয়ে দৃঢ় ছিলেন, একই কারণে মিথুনও টিকে গিয়েছেন দলে। আবার মুশফিকুর রহিম ফিরছেন। লিটন দাস উইকেট সামলাবেন একই সাথে মিডল অর্ডারে ব্যাট করবেন এমন একটা জায়গায় রিয়াদ দলে নাজুক অবস্থানে আছে।" আরেকজন ক্রিকেট বিশ্লেষক তৌসি ইসলাম বলেন, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ শেষ ১০ ইনিংসে মাত্র একটি ফিফটি হাঁকান। এই ফর্মে একজন ব্যাটসম্যানকে কিভাবে রাখা যায় সেটা একটা প্রশ্ন থেকেই যায়। তবে সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে ২০১৮ সালে রিয়াদ বেশ ভালো কিছু ইনিংস খেলেছেন। তৌসি ইসলাম এই সিরিজটিকে পরীক্ষা নীরিক্ষা করার একটা সুযোগ হিসেবেও দেখছেন। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের টেস্ট পরিসংখ্যান বাংলাদেশের নিয়মিত ব্যাটসম্যান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের শেষ টেস্ট ফিফটি এসেছে ২০১৯ সালে নিউচিল্যান্ডের বিপক্ষে। সেবারই শেষ শতকও আসে। এর আগে ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুটো সেঞ্চুরি আছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের। কিন্তু ২০১০ সালে হ্যামিলটন টেস্টের পর প্রায় আট বছরের ব্যবধানে ২০১৮ সালে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ প্রথম সেঞ্চুরি করেন। এই আট বছরে তিনি ফিফটি করেছেন ১২টি, সেখানেও বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে কখনো কখনো। বাংলাদেশের ক্রিকেট পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করেন রিফাত এমিল, তিনি বলেছেন, বাংলাদেশিদের মধ্যে বোল্ড অথবা লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে রিয়াদ আউট হয়েছেন ৩৪ ইনিংস যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, এর মধ্যে বোল্ড হয়েছেন ২০টি ইনিংসে। আর বল হাতেও খুব প্রভাব ফেলেননি একাদশে। মোট ৪৯ টি টেস্ট খেলা রিয়াদ উইকেট নিয়েছেন ৪৩টি। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে বল করলেও শেষ দিকে বল করেননি খুব বেশি। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: কোয়ারেন্টিন শেষ কিন্তু নজরদারিতে আরো ১০দিন চীনে নতুন রোগী কমার দাবি, তবে সন্দিহান ডব্লিউএইচও জিম্বাবুয়ের সাথে টেস্ট শুরু হচ্ছে ২২শে ফেব্রুয়ারি, সেজন্য ঘোষণা হওয়া দল থেকে বাদ পড়েছেন বাংলাদেশের অন্যতম অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। +text: সৌদি আরব বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল রফতানিকারক দেশ সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগজি নিখোঁজ হওয়ার পর এই প্রশ্ন হয়তো অনেকের মনেই আবার জাগছে। যেভাবে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর জামাল খাসোগজিকে হত্যা করা হয়েছে বলে বলা হচ্ছে, তা যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলোকে বেশ বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে। অনেক দেশেই নতুন করে দাবি উঠছে সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন করে বিবেচনার, কেউ কেউ সৌদি আরবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার কথাও বলছেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমা দেশগুলো কি আসলেই সৌদি আরবের বিরুদ্ধে কোন অবস্থাতেই নিষেধাজ্ঞা জারি করবে? যদি না করে, তার কারণ কী? ১. তেলের সরবরাহ এবং দাম বিশ্বে তেলের মওজুদের ১৮ শতাংশ হচ্ছে সৌদি আরবে। তারাই বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল রফতানিকারক দেশ। এটি সৌদি আরবকে বর্তমান বিশ্বে বিপুল ক্ষমতা এবং প্রভাব খাটানোর সুযোগ করে দিয়েছে। সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রির ব্যবসা হারাতে চায় না যুক্তরাষ্ট্র যেমন ধরা যাক, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশ সৌদি আরবের বিরুদ্ধে কোন নিষেধাজ্ঞা জারি করলো। তখন সৌদি আরব তাদের তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিতে পারে। এর ফলে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বেড়ে যাবে, যদি না অন্যদেশগুলো তাদের উৎপাদন বাড়িয়ে তেলের সরবরাহ একই পর্যায়ে রাখতে পারে। সৌদি সরকারের মালিকানাধীন আল আরাবিয়া টেলিভিশনের জেনারেল ম্যানেজার তুরকি আলদাখিল গত রোববার একটি সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছেন। এতে তিনি লিখেছেন, "সৌদি আরবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলে সেটা এমন এক অর্থনৈতিক বিপর্যয় সৃষ্টি করবে, যা গোটা দুনিয়াকে কাঁপিয়ে দেবে।" তিনি আরও লিখেছেন, "তেলের দাম ৮০ ডলার হলেই যদি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষেপে যান, তাহলে এটি যে একশো বা দুশ ডলার হতে পারে, এমনকি তারও দ্বিগুণ হতে পারে, সেই সম্ভাবনা কারও উড়িয়ে দেয়া উচিৎ হবে না।" প্রতি ব্যারেল তেলের দাম বৃদ্ধির এই ধাক্কা শেষ পর্যন্ত ভোক্তা পর্যায়ে আসবে, পেট্রোল পাম্প থেকে চড়া মূল্যেই তেল কিনতে হবে সবাইকে। ২. অস্ত্র ব্যবসা ২০১৭ সালে অস্ত্র কেনায় যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করেছে, তাতে সৌদি আরব ছিল তিন নম্বরে। সুইডেনের 'স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের' হিসেব এটা। গত বছর কেবলমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেই ১১ হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র কেনার চুক্তি করেছে সৌদি আরব। আগামী দশ বছরে এই অস্ত্র ক্রয়ের খরচ শেষ পর্যন্ত দাঁড়াতে পারে ৩৫ হাজার কোটি ডলার। হোয়াইট হাউজের ভাষায়, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এত বিশাল অংকের অস্ত্র কেনার চুক্তি আর কখনো হয়নি। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানিও বিরাট অংকের অস্ত্র ব্যবসা করছে সৌদি আরবের সঙ্গে। মিস্টার আলদাখিলের সম্পাদকীয়তে এমন ইঙ্গিত আছে যে পশ্চিমা দেশগুলো কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে সৌদি আরব তখন চীন আর রাশিয়ার কাছে যাবে অস্ত্র কেনার জন্য। সৌদি আরব যাদের কাছ থেকে অস্ত্র কেনে ৩. নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাসবাদ পশ্চিমা দেশগুলো আরেকটি যুক্তি দেখায় যে সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তা ঠিক রাখা এবং সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ইয়েমেনের যুদ্ধে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে যখন যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠে তারপরও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে সৌদি আরবের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার পক্ষে এই একই যুক্তি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, "সৌদি আরব ব্রিটেনের রাস্তাঘাট নিরাপদ রাখতে সাহায্য করছে।" সৌদি আরব হচ্ছে ইসলামের জন্মস্থান। ইসলামিক স্টেট জঙ্গী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে যে আন্তর্জাতিক জোট হয়েছে, তার অন্যতম সদস্য সৌদি আরব। গত বছর ৪০টি মুসলিম দেশকে নিয়ে সৌদি আরব আরেকটি জোটও গড়ে তুলেছে সন্ত্রাসবাদ দমনের নামে। আরও পড়ুন: সৌদি আরবে কি পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে কানাডার দূত বহিষ্কার, কেন এত ক্ষেপেছে সৌদি আরব সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদের হানিমুনের দিন শেষ? মিস্টার আলদাখিলের ধারণা যদি সৌদি আরবের বিরুদ্ধে পশ্চিমারা কোন নিষেধাজ্ঞা দেয় তাহলে দুই পক্ষের মধ্যে এই বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের আদান-প্রদান একটা অতীতের ব্যাপারে পরিণত হবে। মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ঘনিষ্ঠ মিত্র হচ্ছে সৌদি আরব ৪. আঞ্চলিক জোট মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব খর্ব করতে সৌদি আরব বহুদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে। গত কয়েক দশক ধরেই সুন্নী সৌদি আরব এবং শিয়া ইরানের মধ্যে তীব্র দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছে মধ্যপ্রাচ্যের নানা জায়গায়। সিরিয়ার লড়াইয়ে সৌদি আরব সমর্থন দিচ্ছে সেই সব গোষ্ঠীকে, যারা প্রেসিডেন্ট আসাদকে উৎখাত করতে চায়। অন্যদিকে ইরান আবার রাশিয়ার সঙ্গে মিলে প্রেসিডেন্ট আসাদকে সাহায্য করছে এই যুদ্ধের মোড় তার পক্ষে ঘুরিয়ে দেয়ার জন্য। মিস্টার আলদাখ���ল তার সম্পাদকীয়তে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন যে যুক্তরাষ্ট্র কোন নিষেধাজ্ঞা জারি করলে সৌদি আরবের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক ভালো হবে এবং নতুন অস্ত্র চুক্তি তখন ইরানের সঙ্গে সৌদি সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হতে পারে এমনকী তাদের মধ্যে সমঝোতা পর্যন্ত হতে পারে। ৫. বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সৌদি ব্যবসা-বাণিজ্য হারাতে চায় না যুক্তরাষ্ট্র সহ অনেক দেশ সৌদি আরবের বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো তাদের ব্যবসা হারাতে পারে বলেও হুঁশিয়ার করে দিচ্ছেন মিস্টার আলদাখিল। বর্তমানে সৌদি আরবে মার্কিন পণ্য এবং সেবাখাত প্রায় ৪৬ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করে। এই ব্যবসার বিরাট অংশ যুক্তরাষ্ট্রের অনুকুলে। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দফতরের হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় এক লাখ ৬৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান নির্ভর করছে এই বাণিজ্যের ওপর। এ বছরেরই আগস্ট মাসে সৌদি আরব কানাডার সঙ্গে সব নতুন ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছিল। কারণ কানাডা এক বিবৃতিতে সৌদি আরবের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল সেদেশে নারী অধিকার এবং মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলায় তাদের আটক করা হয়েছিল, তাদের যেন মুক্তি দেয়া হয়। সৌদি আরব তখন ক্ষিপ্ত হয়ে একে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে বর্ণনা করে। সৌদি আরব শুধু কানাডা থেকে শস্য আমদানিই বন্ধ করেনি, তারা সৌদি সরকারের বৃত্তি নিয়ে যে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পড়তে গিয়েছিল, তাদের সবাইকে ফিরে আসার নির্দেশ দেয়। যে অপরাধে অন্য কোন দেশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলো কঠোর ব্যবস্থা নেয়, সৌদি আরবের ক্ষেত্রে কেন সেটি দেখা যায় না? +text: মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটির মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান তিনি। তার অর্থ সারা বিশ্বের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর নজরদারি রাখার দায়িত্ব তার উপর। ফলে তার এই কথার একটা ওজন তো অবশ্যই আছে, বলছেন, বিবিসির দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সংবাদদাতা জাস্টিন রোল্যাট। তিনি বলেন, এই অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হতে পারেন দেশটির একেবারে শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাও- তাদের মধ্যে রাজনৈতিক নেত্রী অং সান সু চি যেমন আছেন, তেমনি আছেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল অং মি হাইংও। জাস্টিন রোল্যাট বলছেন, গণহত্যার অভিযোগে তাদেরকেও যে ভবিষ্যতের কোনো এক সময়ে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতে পারে - এই স���্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এ মাসের শুরুর দিকে মি. আল হুসেইন জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে বলেছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপরে যে ব্যাপক ও পরিকল্পিত উপায়ে নিপীড়ন চালানো হয়েছে সেটাকে গণহত্যা হিসেবেও বিবেচনা করা হতে পারে। জেইদ রা'দ আল হুসেইন বলেছিলেন "যে মাত্রায় সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে সেটাকে গণহত্যা বলা হবে কিনা এ ব্যাপারে একেবারে শীর্ষ পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।" দুই মাসেই রাখাইনের ৪০টি গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জাস্টিন রোল্যাট বলছেন, কোনটা গণহত্যা আর কোনটা গণহত্যা নয় তা নিয়ে প্রচুর বিতর্ক হয়। এটা শুনতেও ভয়াবহ কারণ এটা হচ্ছে 'অপরাধেরও অপরাধ।' এবং এপর্যন্ত এই গণহত্যার অভিযোগে খুব কম সংখ্যক লোকেরই সাজা হয়েছে। গণহত্যাকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের হলোকাস্ট বা হত্যাযজ্ঞের পর। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর গঠিত জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোও এই গণহত্যার ব্যাপারে একটি সনদে স্বাক্ষর করেছে। যেখানে গণহত্যা বলতে বোঝানো হয়েছে- কোনো বিশেষ একটি জনগোষ্ঠীকে নিধন করার লক্ষ্যে তাদের ওপর নিপীড়ন চালানো। গত কয়েক মাসে সাড়ে ছ'লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন জাস্টিন রোল্যাট বলছেন, মিয়ানমারে গণহত্যা চালানো হয়েছে কিনা সেটা প্রমাণ করা জেইদ রা'দ আল হুসেইনের কাজ নয়। একমাত্র আদালতই এই কাজটি করতে পারে। তবে এবিষয়ে তিনি আন্তর্জাতিক তদন্তের আহবান জানিয়েছেন। এবং এটা করতে গিয়ে তিনি মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চলে মুসলিম রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর ওপর হামলাকে 'জঘন্য ও বর্বর' বলে উল্লেখ করেছেন। তবে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার স্বীকার করেছেন এটাকে গণহত্যা হিসেবে তুলে ধরার কাজটাও খুব একটা সহজ হবে না। "কারণ কেউ যখন গণহত্যার মতো অপরাধের পরিকল্পনা করে সেটা তো আর কাগজে কলমে করা হয় না।" তবে তিনি বলেছেন, "এটা প্রমাণ করার জন্যে অনেক কিছুই আছে। ফলে আজ আমরা যা কিছু দেখতে পাচ্ছি সেখান থেকে ভবিষ্যতে আদালত এবিষয়ে তথ্য প্রমাণ বের করলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।" কুলখানির আয়োজনে কেন ঘটলো এতো হতাহতের ঘটনা? গত অগাস্ট মাসে নির্যাতন নিপীড়ন শুরু হওয়ার পর থেকে এই ডিসেম্বরের মধ্যেই সাড়ে ছ'লাখের মতো রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে, যা মোট রোহিঙ্���া জনগোষ্ঠীর দুই তৃতীয়াংশের মতো। এছাড়াও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শত শত গ্রাম এবং কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে। রাখাইনে মিয়ানমার পুলিশের টহল যে ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হচ্ছে তার তথ্য প্রমাণ রয়েছে। যেমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড, খুন, গণহারে ধর্ষণ- এসব অভিযোগ পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের মুখ থেকেই এসেছে। বলা হচ্ছে, অগাস্ট মাসে নিপীড়ন শুরু হওয়ার ছ'মাস আগে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চিকে আহবান জানিয়েছিলেন রোহিঙ্গাদের রক্ষা করতে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্যে। জেইদ রা'দ আল হুসেইন বলেছেন, ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে যে সহিংসতা শুরু হয়েছিলো তার উপর এবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদন প্রকাশের সময় তিনি টেলিফোনে অং সান সু চি'র সাথে কথা বলেছিলেন। মি. আল হুসেইন বলেছেন, "সামরিক বাহিনীর অভিযান বন্ধ করার জন্যে আমি তার প্রতি আহবান জানিয়েছিলাম। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথেই বলতে হচ্ছে যে এরকম কিছু হয়নি।" সেনাবাহিনীর উপর মিস সু চি'র ক্ষমতাও খুব সীমিত। তবে জেই; রা'দ আল হুসেইন বিশ্বাস করেন যে চেষ্টা করলে হয়তো তিনি কিছু একটা করতে পারতেন। মিস সু চি রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ না করাতেও মি. আল হুসেইন মিয়ানমারের নেত্রীর সমালোচনা করেছেন। জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা মনে করেন, ২০১৬ সালের সহিংসতার পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যখন কোন পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয় তখনই মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সাহস বেড়ে যায়। "আমার মনে হয় তখন তারা ধরে নেন যে তারা যেটা করছিলেন কোনো ধরনের ভয়ভীতি ছাড়াই তারা সেটা অব্যাহত রাখতে পারেন," বলেন তিনি। "তবে শুরু থেকেই আমরা অনুমান করতে পারছিলাম যে সবকিছু চিন্তাভাবনা ও পরিকল্পনা করেই করা হচ্ছে।" মিয়ানমার সরকার বলছে অগাস্ট মাসে তাদের নিরাপত্তা বাহিনীর উপর সন্ত্রাসী হামলার জবাবেই তারা সেখানে অভিযান চালাতে শুরু করে। তবে বিবিসির অনুসন্ধানী একটি টিভি অনুষ্ঠানের জন্যে তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখা যায় যে তার বহু আগে থেকেই এই সেনা অভিযানের পরিকল্পনা শুরু হয়েছিলো। নির্যাতনের শিকার এক রোহিঙ্গা নারী ওই অনুষ্ঠানে দেখানো হয় যে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বৌদ্ধদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি তাদের কাছে অস্ত্রও সরবরাহ করছিলো। অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থীও বলেছেন, স্থানী���় স্বেচ্ছাসেবীরা কিভাবে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। মিয়ানমারের একজন সফল ব্যবসায়ী মোহাম্মদ রফিক বলেছেন, "তারা ঠিক সেনাবাহিনীর মতো, তাদের কাছেও ছিলো একই ধরনের অস্ত্র। তারা স্থানীয় কিছু ছেলে। আমরা তাদেরকে চিনতাম। সেনাবাহিনী যখন আমাদের বাড়িঘরে আগুন দিচ্ছিলো, আমাদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছিলো, তখনও তারা সেখানে ছিলো।" এছাড়াও রাখাইনের রোহিঙ্গারা খাদ্য সঙ্কটেরও সম্মুখীন হয়েছিলো। এই রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে গ্রীষ্মকালে খাদ্য সঙ্কট প্রকট আকার নেয় এবং জানা গেছে, অগাস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ের পর থেকে কর্তৃপক্ষ সেখানে সব ধরনের খাদ্য সাহায্য পাঠানো বন্ধ করে দেয়। ধর্ষণ আর হয়রানি: বেরিয়ে এলো যুক্তরাজ্যের সংগীত জগতের 'অন্ধকারের' গল্প এছাড়াও রাখাইনে আরো প্রচুর সৈন্য মোতায়েন করা হয়। জানা যায় নিরাপত্তা বাহিনীর উপর সন্ত্রাসী হামলার দু'সপ্তাহ আগেই সেখানে এক ব্যাটালিয়ন সৈন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। তখন মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দূত সংযম প্রদর্শনের জন্যে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানিয়েছিলেন। কিন্তু রোহিঙ্গা জঙ্গিরা যখন পুলিশের ৩০টি পোস্টের এবং সেনাবাহিনীর একটি ঘাটির ওপর হামলা চালায়, তখন সামরিক বাহিনী কড়া অভিযান শুরু করে। আর সেটা ছিলো পরিকল্পিত ও ভয়াবহ। এবিষয়ে বিবিসির পক্ষ থেকে অং সান সু চি এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিলো। কিন্তু তাদের কেউই বিবিসির প্রশ্নের উত্তর দেন নি। এর চার মাস পরেও সেখানে সহিংসতা চলছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জেই রা'দ আল হুসেইন। তিনি আশঙ্কা করছেন, সেখানকার পরিস্থিতি হয়তো আরো অনেক খারাপও হতে পারে। তার আশঙ্কা হলো বাংলাদেশের শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে এখন জিহাদি গ্রুপের সৃষ্টি হতে পারে যারা হামলা চালাতে পারে মিয়ানমারের উপর। এমনকি তারা বৌদ্ধদের মন্দিরের উপরেও হামলা চালাতে পারে। তখন বৌদ্ধ আর মুসলমানদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু হাই কমিশনার জেইদ রা'দ আল হুসেইনের বয় হচ্ছে যে মিয়ানমারে কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে নিচ্ছে না। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার জেইদ রা'দ আল হুসেইন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন রোহিঙ্গাদের ওপর যে বিভীষিকাময় নির্যাতন চালানো হয়েছে তার জন্যে দায়ী ব্যক্তিদের বিচার একদিন হবেই। +text: এ ধরণের একটি বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ বলছে যাত্রী, ক্রুসহ মোট ৬৬ জনের সবাই মারা গেছে। তেহরান থেকে রওনা দিয়ে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় ইয়াসুজ -এর মধ্যে চলাচলকারী বিমানটি ইসফাহান প্রদেশের সেমিরম শহরের কাছে জাগরস পর্বত এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। জরুরি সেবার একজন মুখপাত্র বলছেন, "সব জরুরী সংস্থাকে সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে"। রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে তারাও উদ্ধার তৎপরতায় যোগ দিয়েছে। আরও পড়ুন স্কুল হত্যাকাণ্ড: এফবিআইকে দুষলেন ট্রাম্প প্রেমে আর যৌনতায় আগ্রহ হারাচ্ছে জাপানী তরুণরা ফ্লোরিডা স্কুল হত্যাকাণ্ডের দিনের নায়করা খারাপ আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। হতাহত সম্পর্কেও কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক বার্তা পাওয়া যায়নি। বিশ বছরের পুরনো এটিআর-৭২-৫০০ বিমানটি আসেমান এয়ারলাইন্সের। স্থানীয় গণমাধ্যমে উঠে আসা খবর অনুযায়ী ৬০জন যাত্রী ছাড়া বিমানটিতে দু'জন নিরাপত্তারক্ষী, দুজন ফ্লাইট সহকারী ছাড়াও পাইলট ও কো-পাইলট ছিলেন। তেহরান ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় ইয়াসুজ -এর মধ্যে চলাচল করছিলো বিমানটি মধ্য ইরানের পর্বতাঞ্চলে বিমানটি যখন বিধ্বস্ত হয় তখন তাতে অন্তত ৬০ জন যাত্রী ছিলো বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। +text: ক্লিফিন ফ্রান্সিস। তার বন্ধু জানতে চেয়েছিলেন যে ক্লিফিন এবারের রাশিয়া বিশ্বকাপের খেলাগুলো দেখবে কি-না। তার উত্তর ছিলো, "অবশ্যই। আমি এমনকি রাশিয়া চলেও যেতে পারি খেলা দেখতে"। সেটা ছিলো গত বছর অগাস্টের ঘটনা। তখনো তার মাথায় ছিলোনা কীভাবে বিমান টিকেট যোগাড় হবে কেরালা থেকে রাশিয়া যাবার জন্য। পেশায় শিক্ষক তবে তার স্থায়ী চাকুরী নেই। গণিতের ফ্রিল্যান্সিং শিক্ষক হিসেবে তার আয় দিনে প্রায় ৪০ ডলারের মতো। "আমি অনুধাবন করলাম রাশিয়ায় যাওয়া ও এক মাস সেখানে থাকার জন্য আমার যথেষ্ট টাকা নেই। তারপরেই নিজেকে প্রশ্ন করতে থাকি যে কমদামে কি উপায় হতে পারে। আর এটার উত্তর ছিলো বাইসাইকেল"। আর এতো কষ্টের চিন্তার একটাই কারণ সেটি হলো পুরষ্কার হিসেবে সেখানে মিলতে পারে লিওনেল মেসিকে দেখার সুযোগ। তিনি বিবিসিকে বলেন, "আমি সাইকেল ভালোবাসি ও ফুটবল পাগল। শুধু এ দুটোরই সমন্বয় ঘটিয়েছিলাম আমি"। প্রথমে পরিকল্পনা করেছিলেন যে পাকিস্তান হয়ে যাবেন কিন���তু পরে সেটি বাদ দেন ভারতে পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনাকর সম্পর্কের কারণে। আরো পড়ুন: আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল সমর্থকে বিভক্ত ভারতের যে শহর বাংলাদেশে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা উন্মাদনা কবে থেকে? অনলাইনে মেসি-রোনাল্ডো ভক্তদের 'বিদ্রূপ-যুদ্ধ' ফুটবল আর বলিউড সিনেমা অচেনা জায়গায় তার কাজ সহজ করেছে। ফুটবল এবং ফিল্ম পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনার জন্য কিছুটা মূল্যও দিতে হয় ক্লিফিনকে। যেমন দুবাইতে নিজের সাইকেল নিতে পারেননি বরং সেখানে আরেকটি কিনতে হয়েছে প্রায় সাতশ ডলার খরচ করে। অনেক পথ পাড়ি দিয়ে তিনি ১১ই মার্চ ইরানের বান্দার আব্বার বন্দরে প্রবেশ করেন। "এটা বিশ্বের চমৎকার একটি দেশ এবং মানুষগুলোও চমৎকার। ৪৫ দিন ওখানে কাটিয়েছি অথচ এর মধ্যে হোটেলে ছিলাম মাত্র দু দিন"। আসলে ইরানের যেখানেই গিয়েছেন সেখানেই স্থানীয়দের অতিথি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। "ইরান সম্পর্কে আমার ধারণাই বদলে গেছে। আসলে ভূ রাজনীতির ওপর ভিত্তি করে কোন দেশ সম্পর্কে ধারণা করাই উচিত নয়"। তিনি বলেন, "ইরানীরা আমার কাছ থেকে কথা নিয়েছে যে রাশিয়ায় ইরান দলকে সমর্থন যোগাবো। আর তারাও বলিউডের সিনেমা পছন্দ করে। আসলে এটিই আমাকে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরিতে সহায়তা করেছে"। এমন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়েছে তাকে। সাইক্লিং করে চেহারাই পরিবর্তন ইরান থেকে তিনি সাইকেল চালিয়ে যান আজারবাইজান। কিন্তু সমস্যায় পড়েন সীমান্তে। কারণ পাসপোর্টে যে ছবি আছে সেটি দেখে ঠিক বিশ্বাস হচ্ছিলোনা সীমান্ত পুলিশের। "কারণ অতিমাত্রায় সাইক্লিং এর কারণে ততদিনে আমার ওজন প্রচুর কমে গিয়েছিলো। পাসপোর্টের ছবির মতো আমাকে দেখাচ্ছিলোনা। আট ঘণ্টা সময় নিয়ে পুলিশ আমার তথ্যাদি যাচাই করেছে। যদিও তারা বেশ ভালো আচরণই করেছিলো আমার সাথে"। আজারবাইজানেও হোটেল এড়াতে নিজের বহন করা তাঁবুতেই অবস্থান করেছেন তিনি। মাঝে মধ্যে দেখা হয়েছে অন্য সাইক্লিষ্টদের সাথেও। আটকে ছিলেন 'নো ম্যানস' ল্যান্ডে এরপর যখন জর্জিয়াতে পৌঁছালেন তখন মিস্টার ফ্রান্সিসকে আর সেখানে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছিলোনা। ফলে তার পরিকল্পনায় আরও কিছু পরিবর্তন আনতে হয়। "সব ডকুমেন্টস ছিলো আমার। তারপরেও জানিনা কেন আমাকে অনুমতি দিলোনা তারা। তারা বিপদেই ফেলে আমাকে কারণ আজারবাইজানের জন্য আমার সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা ছিলো"। এরপর পুরো একদিন তিনি ���টকে থাকেন জর্জিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে নো ম্যানস ল্যান্ডে। পরে জরুরি ভিসা পান আজারবাইজানে পুনরায় প্রবেশের জন্য। "পরে আরেকটি রুট বের করি রাশিয়ায় যাওয়ার জন্য। লোকজন বলে আজারবাইজানের সাথে রাশিয়ার দাগেস্তান অঞ্চলের স্থল সীমান্ত আছে। সেখানেই যাই আমি। কিন্তু জায়গাটা ঠিক নিরাপদ মনে হলোনা। কিন্তু আমার ফিরে যাওয়ার উপায় ছিলোনা। ৫ই জুন দাগেস্তানে প্রবেশ করি"। পাড়ি দিতে হয়ে প্রতিকূল পরিবেশ ও আবহাওয়া। ভাষা ছিলো বড় একটি সমস্যা কারণ লোকজন ইংরেজি বুঝতো না। "বরং একজন ভারতীয়কে সাইকেলে করে তাদের এলাকায় প্রবেশ করতে দেখে তারা অবাক হয়। এখানে আবার সেই ফুটবল আর সিনেমাই আমাকে তাদের সাথে সহজ করে তোলে"। এরপর তিনি সেখান থেকে যান তামভবে যেটি মস্কো থেকে সড়কপথে ৪৬০ কিলোমিটার দুরে কিন্তু তাকে যেতে হবে মস্কো ২৬শে জুনের ফ্রান্স বনাম ডেনমার্কের খেলা দেখতে কারণ ওই একটি খেলার টিকেটই তার আছে। সহজেই মিশেছেন অন্য দেশের মানুষের সাথে। "কিন্তু আমি সমর্থন করি আর্জেন্টিনা এবং লিওনেল মেসি আমার প্রিয়। তাকে পুজো করি আমি। তার সাথে দেখা করা আর তাকে আমার সাইকেলে একটা অটোগ্রাফ দেয়ার কথা বলাটাই আমার স্বপ্ন"। ক্লিফিন ফ্রান্সিসের আশা একদিন তার দেশ ভারতও বিশ্বকাপ খেলবে আর সেটি হলে আগামী দু দশকের মধ্যেই। তিনি বলেন রাশিয়ার পথে তার যাত্রার এ গল্প পড়ে যদি একটি শিশুও সাইক্লিং ও ফুটবল নিয়ে আগ্রহী হয় তাহলেই তিনি সার্থক। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: বিশ্বকাপে দর্শকদের সমর্থন বদলে দিচ্ছে যে দলগুলো বিশ্বকাপে ফ্লার্ট করা নিয়ে বিপাকে আর্জেন্টিনা খেলা শেষে জাপান সমর্থকরাই পরিষ্কার করলো স্টেডিয়াম আইসল্যান্ডের ফুটবল দলের সাফল্যের পেছনে যারা আবেগের জোয়ার ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় যুবক ক্লিফিন ফ্রান্সিস তখন বাড়িতে বসেই বন্ধুর সাথে কথা বলছিলেন। +text: ব্রিটেনের রানী এলিজাবেথ রানীর এলিজাবেথের শাসনকালের 'নীলা জয়ন্তী' পালন অনুষ্ঠান উপলক্ষে ব্রিটিশ ফটোগ্রাফার ডেভিড বেইলির তোলা একটি ছবি প্রকাশিত হয়েছে। ছবিটি রানীর কার্যালয়ে তোলা, রানী নীলকান্তমণির অলঙ্কার এবং নীল রঙেরই পোশাক পরে আছেন। ২০১৪ সালে রানির ৮৮তম জন্মদিনে ধারবাহিক যেসব ছবি তুলেছিলেন বেইলি সেগুলোরই একটি এটি। রানীর সিংহাসনে আরোহনের 'নীলা জয়ন্তী' উপলক্ষে এটি আবারও প্রকাশ করা হয়েছে। ব্রিটিশ রাজা ষষ্ঠ জর্জ ১৯৪৭ সালে রানী এলিজাবেথের বিয়েতে এসব অলঙ্কার উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন। 'নীলা জয়ন্তী' উদযাপন উপলক্ষে লন্ডন থেকে ৪১ বার তোপধ্বনি করে রানীকে রাজকীয় অভিবাদন জানানো হবে। আরও পড়তে পারেন: মৃত্যুর অনুমতি চাওয়া পরিবারটির পাশে ভারত- চীন ‘যুক্তরাষ্ট্রের কিছু হলে আদালত দায়ী থাকবে’ ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাজ্যে সবার জন্য খুলে দেয়া হয় দেড়'শ মসজিদ ১৯৫৩ সালে তোলা ছবি বিশ্বে সবচেয়ে বেশিদিন ধরে রাজত্ব করা ব্রিটেনের রানী এলিজাবেথ সিংহাসনে অধিষ্ঠানের ৬৫ বছর পূর্ণ করেছেন। +text: ২১শে অগাস্টের গ্রেনেড হামলার পর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে অবিস্ফোরিত একটি গ্রেনেড ২০০৪ সালে ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের একটি সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতা সেদিন অল্পের জন্য বেঁচে গেলেও ২৪ জন নিহত হন। আহত হন চারশো’র বেশি নেতাকর্মী। তাদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন। "যখন নেত্রীর (শেখ হাসিনা) বক্তব্য দেয়া শেষ করে বলেন যে এখন র‍্যালি হবে তখন আইভি রহমান মঞ্চের নীচে থেকে সিঁড়ির কাছে আসলেন, তখন হঠাৎ করে বিকট আওয়াজ হলে দেখলাম আইভি রহমান পড়ে গেছেন। তাকে সেভ করার জন্য আমি লাফ দিয়ে গিয়েছিলাম এসময় বোমার আঘাতে আমার গা ও পা ঝাঁজড়া হয়ে গেল"। বলেন সেদিনের হামলায় আহত এক ব্যবসায়ী নাজিমুদ্দিন নাজমুল। আওয়ামীলীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমান ঐ হামলায় আহত হওয়ার ৪ দিন পর মৃত্যুবরণ করেন। তবে এতদিন পার হয়ে গেলেও সুরাহা হয়নি গ্রেনেড হামলার মামলা। যদিও সংশ্লিষ্টরা বলছেন শিগগিরি পাওয়া যাবে এর রায়। মামলার বিচারকাজ শেষ পর্যায়ে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। কিছুদিন আগে আইন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছিলেন যে সেপ্টেম্বর নাগাদ মামলার রায় হতে পারে। ২১শে আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার একযুগ পার হতে চলেছে আজ। +text: কর্মীদের অফিসের পরিবর্তে বাসায় বসে কাজ করতে উৎসাহিত করছে অনেক প্রতিষ্ঠান এদের মধ্যে রয়েছে গ্রামীণফোন, রবি আজিয়াটা, বাংলালিংক, ইউনিলিভার, রেকিট অ্যান্ড বেনকিজারের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো। বন্ধ ঘোষণার পরে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও রিমোট প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর ব্যবস্থা নিয়েছে। যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে কোম্পানিগুলো রবি আজিয়াটা লিমিটেডের চীফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার শাহেদ আলম বিবিসিকে বলছেন, ''প্রায় দুই বছর আগে থেকেই আমাদের কর্মীদের বাসায় থেকে কাজ করার একটা অপশন দিয়ে রেখেছিলাম। সেটাই এখন আমাদের কাজে লাগছে।'' ''আমরা কর্মীদের বলেছি, শারীরিক উপস্থিতির দরকার না হলে অফিসে আসার দরকার নেই। সবার বাসায় কাজ করার সুবিধা আছে। সবাইকে ভিপিএন সংযোগ দিয়েছি, মিটিংগুলো ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হচ্ছে।" "এছাড়াও মার্কেটে যে কর্মীরা কাজ করেন, তাদের মুভমেন্ট সীমিত করে দিয়েছি। যাতে প্রোডাক্ট অনলাইনে বিক্রি করা যায়। ফিজিক্যাল মুভমেন্ট কমিয়ে দিয়েছি।'' করোনাভাইরাস গাইড: আপনার প্রশ্নের উত্তর করোনাভাইরাস ঠেকানোর সুযোগ কতটা কাজে লাগিয়েছে বাংলাদেশ করোনাভাইরাস: লক্ষণ দেখা দিলে আলাদা থাকতে হবে কীভাবে করোনাভাইরাস থেকে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন যে পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা যাবে করোনাভাইরাস প্রতিষ্ঠানটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আপাতত কয়েক সপ্তাহের জন্য তাদের প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের উপস্থিতি অর্ধেকের কম হবে। রবি আজিয়াটায় তেরশোর বেশি কর্মী কাজ করেন। ''আমাদের সব কর্মীদের হেলথ ট্র্যাকার দিয়েছি, যার মাধ্যমে প্রতিদিন তাদের স্বাস্থ্য নিয়ে রিপোর্ট করতে পারবেন। ফলে তাদের ক্লোজলি মনিটরিং করা সম্ভব হচ্ছে। কোন সমস্যা দেখা দিলে তারা তাৎক্ষণিকভাবে রিপোর্ট করতে পারবেন, আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।'' তবে গ্রাহকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের কারণে সবাই বাসায় থেকে কাজ করতে পারবেন না, অনেককে অফিসে আসতে হবে। প্রযুক্তি ব্যবহার করেই রিমোট ওয়ার্কিং ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। শাহেদ আলম বলছেন, ''যাদের অফিসে আসতে হবে, তাদের স্বাস্থ্য সতর্কতার সব ব্যবস্থা আমরা রেখেছি। এমনকি পার্টনার কল সেন্টার সেবা দিচ্ছেন যেসব থার্ড পার্টি, তাদের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি, যাতে তারাও হাইজিন রক্ষা করেন এবং স্বাস্থ্য সতর্কতার বিষয়গুলো মেনে চলেন।'' একই ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছে গ্রামীণফোন, বাংলালিংক ও ইউনিলিভারের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো। গ্রামীণফোনের হেড অব এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন মুহাম্মদ হাসান একটি বার্তায় বলেছেন, ''নিরাপত���তা আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের এমপ্লয়ী, যারা সরাসরি গ্রাহক সেবার সাথে জড়িত নন - তাদেরকে বাসা থেকে অফিস করার জন্য উৎসাহিত করছি।'' বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: বিবিসি বাংলার জরিপে শ্রেষ্ঠ বাঙালি: শেখ মুজিবুর রহমান শেখ মুজিবের জন্মশতবার্ষিকী আজ, বাংলাদেশে আজ থেকে মুজিববর্ষ মালয়েশিয়ায় আক্রান্তদের অর্ধেকই গিয়েছিলেন তাবলীগের এক জমায়েতে আরডিসি নাজিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে 'কঠিন ব্যবস্থা' - জনপ্রশাসন সচিব ''একই সাথে যারা সরাসরি গ্রাহক সেবা দিবেন তাদের জন্য যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে উৎসাহিত করছি । একই সাথে ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করার উপর গুরুত্ব দিচ্ছি যেন সরাসরি যোগাযোগ যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা যায়।'' রিমোট ওয়ার্কিং যেভাবে কাজ করে ইউনিভার্সিটি অফ লিবারেল আর্টসের মিডিয়া স্টাডিজ এন্ড জার্নালিজম বিভাগের অধ্যাপক সুমন রহমান, প্রযুক্তি ব্যবহার করেই রিমোট ওয়ার্কিং ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। ''যেমন এখন আমরা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়ে অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করছি। নির্দিষ্ট সময়ে শিক্ষার্থীরা একটা সময় বসে ক্লাস করে নেয়া হবে। শিক্ষার্থীরা সেই সময়ে উপস্থিত থেকে ক্লাসের মতো করেই শিক্ষা নিতে পারবেন, প্রশ্ন করতে পারবেন।'' ''এখন অনেক প্রযুক্তি তৈরি হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান নিজেদের মতো করেও নানা প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে নিয়েছে। ভিপিএন ব্যবহার করে, নিজস্ব সার্ভার ব্যবহার করায় সেগুলো যথেষ্ট নিরাপদ থাকে, অন্য কেউ সেখানে প্রবেশ করতে পারেন না। ফলে অফিসে যেভাবে তারা কাজ করেন, বাসায় বসেও ঠিক একইভাবে কাজ করতে পারেন। অনেকে ফেসবুকও ব্যবহার করেন।'' বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে উদ্বেগ বাড়ছে মি. রহমান বলছেন, ''এসব ক্ষেত্রে মনিটরিংয়েরও অনেক ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে। কাজ নির্দিষ্ট করে দেয়া হচ্ছে, ফলে অফিসে যেভাবে একজন কর্মীকে মনিটরিং করা হয়, এখানেও তাই হয়। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মিটিং হয়, সিদ্ধান্ত হয়।" "আসলে এখনকার যুগে অফিসে বসে কাজ করা আর বাসায় বসে কাজ করার মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই।'' তবে যাদের সরাসরি গ্রাহকদের সঙ্গে কাজ করতে হয়, তাদের অবশ্য অফিসে আসতে হয়। সুযোগ নেই কারখানার কর্মীদের অধ্যাপক সুমন রহমান বলছেন, অনেক বড় বড় কোম্পানি বাসায় বসে কাজ করার ব্যবস��থা করতে পারলেও, তৈরি পোশাক কারখানা, দোকানপাট ইত্যাদি খাতের কর্মীদের এই সুযোগ পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। কিন্তু তাদের অনেককে একই স্থানে বসে কাজ করতে হয়। করোনাভাইরাস জনিত পরিস্থিতিতে এই কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন মি. রহমান। করোনাভাইরাসের কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বাসায় থেকে কাজ করতে উৎসাহিত করছে। +text: টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করছেন শেখ হাসিনা এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো মন্ত্রিসভা গঠন করলেন শেখ হাসিনা। বিকাল পৌনে ৪টার দিকে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ শেখ হাসিনাকে শপথ পড়ান। এরপরে অপর মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা শপথ গ্রহণ করছেন। আরো পড়ুন: ৪৭ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা, আজ শপথ বাংলাদেশে মন্ত্রীরা কী সুযোগ সুবিধা পান? নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে যা বললেন তোফায়েল মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম রবিবার সচিবালয়ে ব্রিফিং করে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ও তাদের মন্ত্রণালয় কোনটি হবে সেটি প্রকাশ করেছেন। তবে এবারের মন্ত্রিসভায় অনেক নতুন মুখের পাশাপাশি ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর গঠিত মন্ত্রিসভায় ছিলেন এমন অনেকেও স্থান পেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও মোট ৪৬ জন এবারের মন্ত্রিসভায় আসছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি জানিয়েছেন, এবারের মন্ত্রিসভায় ৩১ জন নতুনভাবে এসেছেন। তবে এবারের মন্ত্রিসভায় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও মতিয়া চৌধুরীর মতো নেতারা জায়গা পাননি। আরো বাদ পড়েছেন নুরুল ইসলাম নাহিদ, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আসাদুজ্জামান নূর, শাজাহান খান, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, এ এইচ মাহমুদ আলীসহ আগের মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন মন্ত্রী। নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী উনার পছন্দমত যোগ্য সৎ আদর্শবাদন ব্যক্তিদের নিয়েই কেবিনেট করেন। "আমার মনে হয় তিনি সেজন্যই করেছেন ও ভালোই করেছেন"। মিস্টার আহমেদ বলেন, "আমি ৭২ সাল থেকে প্রতিমন্ত্রী, ৯৬এ মন্ত্রী ছিলাম। নির্বাচনকালীন সরকারে শিল্প ও গৃহায়ন এবং পরে আবার বানিজ্যমন্ত্রী ছিলাম। সুতরাং আমরা যারা পুরনো নতুনদের তো জায়গা দিতে হবে। একসময় তো যেতে ���বে"। ২০০৯ সাল থেকে টানা তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা। এর আগে ১৯৯৬ সালে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশে টানা তৃতীয়বারের মতো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শপথ গ্রহণ করেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা। +text: গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মার্কিনীদের মধ্যে ভ্যাকসিনের আগ্রহ কমছে। তাই মানুষকে ভ্যাকসিন নিতে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ওহাইও অঙ্গরাজ্যের সরকার বের করেছে এক অভিনব পন্থা। তারা পাঁচ সপ্তাহের জন্য একটি লটারির আয়োজন করেছে যেখানে প্রত্যেক বিজয়ী ১০ লক্ষ ডলার করে পুরস্কার পাবেন। ওহাইও রাজ্যের গভর্নর মাইক ডিওয়াইন বলছেন, ভ্যাকসিন নিয়েছেন এমন প্রাপ্তবয়স্করাই এই লটারিতে যোগদান করতে পারবেন। তিনি বলেন, পাঁচটি লটারির প্রথমটির বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২৬শে মে। কেন্দ্র সরকার করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবেলায় যে অর্থ বরাদ্দ করেছে তার থেকে এই অর্থ ব্যয় করা হবে বলে তিনি জানান। ওহাইও‌'র গভর্নরের টুইট আরও পড়তে পারেন: বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রাপ্তবয়স্ককে টিকা দেয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে মোট জনসংখ্যার ৫৮.৭০% মানুষ টিকা নিয়েছেন। কিন্তু সে দেশে তিন কোটি ২০ লক্ষ মানুষ এখন করোনায় আক্রান্ত, যেটি বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগামী ৪ঠা জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসের মধ্যে ৭০% প্রাপ্তবয়স্ককে টিকার আওতায় আনার ঘোষণা করেছেন। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সারা দেশে টিকা নিতে আসা লোকের সংখ্যা কমছে। ভ্যাকসিন নিয়ে মানুষের দ্বিধার জন্যই এমনটা ঘটছে বলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন। এই পটভূমিতে মানুষকে টিকা নিতে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে নানা অঙ্গরাজ্যের সরকার নগদ অর্থ ছাড়াও বিয়ার, ডোনাট, নানা ধরনের খেলা দেখার জন্য ফ্রি টিকেট দিচ্ছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন ১২ বছরের শিশুদেরও কোভিড টিকা দিতে চান। "আমি জানি অনেকেই হয়তো বলবেন, 'ডিওয়াইন, তোমার মাথা খারাপ হয়েছে!'" মি. ডিওয়াইন টুইটারে এক পোস্টে লিখেছেন, " ১০ লক্ষ ডলার লটারি পুরষ্কার দেয়া হবে অর্থের অপচয়।" "কিন্তু এই মহামারির সময় আসল ক্ষতি হলো ভ্যাকসিন মজুদ থাকার পরও কেউ যদি সেটা না নেয়, এবং এজন্য যদি কোন প্রাণহানি ঘটে, সেটা।" ওহাইও অঙ্গরাজ্য একই সঙ্গে ১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্যও আলাদা ��টারির ব্যবস্থা করেছে। তবে তারা ১০ লক্ষ ডলার নয়, তারা পাবেন ওহাইওর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চার বছর বিনে পয়সায় পড়াশুনা করার স্কলারশিপ। গভর্নর ডিওয়াইন জানান, রাজ্যে ভোটার তালিকা থেকে টিকা নেয়া লোকের নাম নির্বাচন করা হবে। গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, টিকা সম্পর্কে যারা 'বিভ্রান্ত', সরকার চেষ্টা করছে তাদের ভুল ভেঙে দেয়ার জন্য। তার পরিকল্পনায় ১২ বছর বয়সীদেরও টিকার দেয়ার প্রস্তাব রয়েছে। বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: নানা দেশে মানুষ কোভিড ভ্যাকসিনের জন্য মাথা ঠুকলেও যুক্তরাষ্ট্রে দৃশ্যতঃ এর চাহিদা কম। +text: বুয়েট বলছে, তারা সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা কর্মসূচীতে অংশ নেবে না, আগের মতোই নিজেরাই আলাদা ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করবে তারা। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা পরিষদের সদস্য ও ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান বিবিসিকে জানিয়েছেন বুধবার শিক্ষা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি বলেছেন, "৪৮ বছর ধরে যে পদ্ধতিতে বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা হয়ে আসছে তাতে আমরা সেরা শিক্ষার্থীদেরই পাচ্ছি, এটা একেবারে প্রমাণিত। তাই আমরা আগের মতোই পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।" এমাসের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশন ঘোষণা দিয়েছে যে বাংলাদেশের সবকটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা সমন্বিতভাবে হবে। এর আগে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে আলাদা পরীক্ষা দিতে হতো। আলাদা ফর্ম কিনে জমা দিতে হতো। কমিশন এই শিক্ষাবছর থেকেই এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে। দেশে ১২ টির মতো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। চলমান ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তির জন্য সাতটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগে সমন্বিত পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ চারটি বিশ্ববিদ্যালয় হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এর আগে জানিয়েছে যে এই চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে চাইলে একজন শিক্ষার্থীকে চার রকমের প্রস্তুতি নিতে হয়। অনেক সময় একই তারিখে পড়ে যায় একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা। এসব জটিলতা দুর করতে সমন্বিত পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানানো হয় মঞ্জুরি কমিশনের পক্ষ থেকে। কি��্তু এখন বুয়েট সমন্বিত পরীক্ষা থেকে বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলো। এমন ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে অবশ্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে যে দ্বিমত রয়েছে তা আগেই জানা গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ২৪ তারিখ তাদের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছে। বাংলাদেশে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত যে ভর্তি পরীক্ষার ঘোষণা দেয়া হয়েছে তাতে অংশ নিচ্ছে না বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। তারা আলাদা করে আগের মতই পরীক্ষার ব্যবস্থা করবেন। +text: কবুতর ছিল সবচাইতে কার্যকর গুপ্তচর। কিন্তু খুব বেশিদিন নয়, রাশিয়ার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালীন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ কবুতর, কাক ও ডলফিন ব্যবহার করতো গুপ্তচর হিসেবে। সম্প্রতি সিআইএ এই বিষয়ক বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে। কী করতো এই গুপ্তচরেরা? প্রকাশিত তথ্য দেখা যাচ্ছে গোপন মিশনের জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হতো এসব প্রাণীদের। কবুতর স্নায়ু যুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের গোপন স্থাপনার ছবি তুলতে প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। সিআইএ কাক পাঠাতো জানালায় গোপন মাইক ফেলে আসার জন্য। তাকে প্রশিক্ষণ দেয়া হতো ৪০ গ্রাম পর্যন্ত ওজনের কোন বস্তু জানালার ধারে ফেলে আসা বা নিয়ে আসার জন্য। যেসব ভবনে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকতো সেখানে তাদের পাঠানো হতো। কাক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিলো জানালায় গোপন মাইক ফেলে আসার জন্য। লেজার তাক করে তাকে কোথায় বস্তুটি ফেলতে হবে সেই টার্গেট বুঝিয়ে দেয়া হতো। আর ছোট বাতির মাধ্যমে সংকেত দিয়ে তাকে ফিরে আসতে সাহায্য করা হতো। আরো পড়ুন: কবুতরের সংস্পর্শে রোগ হতে পারে মানুষের শরীরে? ডিভোর্স, কিন্তু এর জন্য দায়ী কবুতর খেলা? ডলফিন প্রশিক্ষণ দেয়া হতো পানির নিচের মিশনে বিশেষ করে বন্দরের নিচে ঢোকার জন্য। ডলফিন দিয়ে হামলার চেষ্টাও হয়েছে। এমনকি পরিযায়ী পাখি দিয়ে এমন গুপ্তচরবৃত্তি করানো যায় কিনা সেই চিন্তাও ছিল। কুকুরের মস্তিষ্কে বৈদ্যুতিক তরঙ্গ দিয়ে দুর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় কিনা সেই গবেষণাও হয়েছে। ষাটের দশকের শেষের দিকে সিআইএ এসব গোয়েন্দা মিশনে প্রাণী পাঠানোর জন্য ৬ লাখ ডলার পর্যন্ত খরচ করতো। সবচেয়ে সফল গুপ্তচর কবুতর তবে কবুতর ছিল সবচাইতে কার্যকর কারণ তাদের খুব দারুণ একটা ক্ষমতা হল শত মাইল দুরের অপ���িচিত কোন যায়গায় ফেলে আসার পরও তারা ঠিকই পথ খুঁজে বাড়ি ফিরে আসে। যুদ্ধ চলাকালীন তথ্য আদান প্রদানে হাজার বছর ধরে কবুতর ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের সময় গোপন তথ্য সংগ্রহে কবুতর ব্যবহার করা হতো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থার গোপন কবুতর গোয়েন্দা বাহিনী ছিল। যাকে কিনা বলা হতো "সিক্রেট পিজন সার্ভিস" । এই বিশেষ কবুতর গোয়েন্দা বাহিনীর এক হাজারের বেশি কবুতর সফলভাবে বার্তা নিয়ে ফিরে এসেছিলো। জার্মানদের রাডার স্টেশন ও রকেট ছোড়ার স্থাপনা সম্পর্কে তাদের কাছ থেকে তথ্য পাওয়া গেছে। ৭০ এর দশকে টাকানা নামে একটি অভিযানের অংশ হিসেবে কবুতর দিয়ে ছবি তোলার বিষয়টি চিন্তা করা হয়েছিলো। সিআইএ সেসময় কবুতর দিয়ে ছবি তোলার পরীক্ষামূলক অভিযান শুরু করে। ৩৫ গ্রাম ওজনের ক্যামেরা তাদের শরীরে ঝুলিয়ে দেয়া হতো। সেই ক্যামেরাগুলো ছিল স্বয়ংক্রিয়। কবুতরের কাজ ছিল সঠিক যায়গা দিয়ে উড়ে যাওয়া। সাম্প্রতিক সময় মার্কিন নৌবাহিনী মাইন অপসারণের ডলফিন ব্যবহার করেছে। সেই ক্যামেরা দিয়ে তোলা ছবিগুলো বেশি পরিষ্কার ছিল। সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেতরে গোপন স্থাপনায় তাদের কিভাবে নিয়ে যাওয়া হবে সেনিয়েও নানা গবেষণা হয়েছে। ১৯৭৬ সালের একটি নথি অনুযায়ী লেনিনগ্রাদের কাছে রাশিয়ার সবচাইতে শক্তিশালী সাবমেরিন তৈরি করতো এমন একটি বন্দরকে নির্বাচিত করা হয়েছিলো গুপ্তচর কবুতরদের মিশনের জন্য। কিন্তু এর পর থেকে এই কবুতরেরা কতগুলো সফল মিশনে গেছে এবং তা থেকে কী ধরনের গোপন তথ্য মিলেছে সে সম্পর্কিত নথিপত্র এখনো গোপনই রয়ে গেছে। তাই এর বেশি কিছু আর জানা যায়নি। অন্যান্য খবর: সৌদি তেল শোধনাগারের ওপর ড্রোন হামলা কিসের ইঙ্গিত হামজা বিন লাদেনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন ট্রাম্প পুলিশি অভিযানের নাটক সাজিয়ে বিয়ের প্রস্তাব হাজার বছর আগেও চিঠি আদানপ্রদানে কবুতরের ব্যবহারের কথা জানা যায় বিশ্বের অনেক অঞ্চলের ইতিহাসে। +text: চুল শুকানোর যন্ত্র নিয়ে মাঠ শুকানো দেখছেন ভিরাট কোহলি যেখানে দেখা গিয়েছে পিচ শুকোতে নিয়ে আসা হয়েছে হেয়ার ড্রায়ার বা চুল শুকানোর যন্ত্র, এমনকি ইস্ত্রীও। এনিয়ে ক্রিকেট অনুসারীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরণের হাস্যরস করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাস্যরস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাস্যরস আ��ামের গৌহাটিতে এই ম্যাচটি শুরু হওয়ার কথা বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা। কিন্তু বাধ সাধে বৃষ্টি। টস হয়েছে ঠিকই, টসে জিতে ভিরাট কোহলি বোলিং নিলেও, বল হাতে নেয়ার সুযোগ পায়নি ভারতের ক্রিকেট দল। বৃষ্টি থামে ঠিকই কিন্তু মাঠ শুকোতে তো হবে! বিবিসি বাংলায় এমন আরো কিছু খবর: ফেসবুক, ইউটিউবে বছরজুড়ে ভাইরাল যা কিছু সাকিব আল হাসান আর বিসিবির দিকেই দৃষ্টি সবার আড়ং বন্ধের পর বদলি নাটক, সামাজিক মাধ্যম সরগরম আম্পায়ারদের ছাতা নিয়েই মাঠে নামতে হয় বৃষ্টির কারণে দর্শকের কমতি ছিল না গৌহাটির স্টেডিয়ামে সেই মাঠ শুকাতে অদ্ভুত, অদ্ভুত কাজ করে নিয়োজিত কর্মীরা। সুপার সোপার যা উইকেট শুকানোর নিয়মিত একটি যন্ত্র সেটা কাজ করে গেছে পুরোদমে। কিন্তু এর সাথে নিয় আসা হয় ইস্ত্রী ও চুল শুকানোর যন্ত্র বা হেয়ার ড্রায়ার। আম্পায়াররা বার বার মাঠে ঢুকে তদারকি করে কিন্তু ম্যাচ শুরু হওয়ার মতো শুষ্ক হয়ে ওঠেনি মাঠ। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় সময় ১০টার কিছুক্ষণ আগে ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। তিন ম্যাচের এই টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি আগামীকাল ইন্দোরের হোলকার স্টেডিয়ামে হবে। টসের আগে দুই দলের অধিনায়ক ভিরাট কোহলি ও লাসিথ মালিঙ্গা বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: ব্যস্ত রাস্তা থেকে ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ দিল্লিতে ছাত্র-শিক্ষকদের ওপরে মুখোশধারীদের হামলা বিদেশী সৈন্য ইরাক ছাড়ো: পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাশ শ্রীলঙ্কা ও ভারতের মধ্যকার সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এক বলও মাঠে গড়ায়নি। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঠিকই আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। +text: তখনও অক্ষত ছিল বাবরি মসজিদ। অক্টোবর ১৯৯০ এর পাশাপাশি মুসলিমদের মসজিদ বানানোর জন্য বরাদ্দ করা হচ্ছে অযোধ্যাতেই অন্য কোনও 'বিকল্প' স্থান। বলা হয়েছে, মসজিদ বানানোর জন্য অযোধ্যারই কোনও উল্লেখযোগ্য স্থানে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে পাঁচ একর জমি দিতে হবে। এই মন্দির ও মসজিদ বানানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে একটি ট্রাস্ট গঠনেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অযোধ্যার যে ২.৭৭ একর জমিকে বিরোধের মূল কেন্দ্র বলে গণ্য করা হয়, তার মালিকানা দেওয়া হয়েছে 'রামলালা বিরাজমান' বা হিন্দুদের ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের শিশুরূপের বিগ্রহকে। যার অর্থ সেখানে রামমন্দিরই তৈরি হবে। কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে দেওয়��� হয়েছে অযোধ্যা ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-র নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি সাংবিধানিক বেঞ্চ এদিন সর্বসম্মতিক্রমে এই রায় দেয়। এর আগে ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারতে বর্তমানে ক্ষমতাসীন বিজেপির শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতেই উগ্র কট্টরপন্থী বিভিন্ন হিন্দু সংগঠনের সদস্যরা অযোধ্যার ওই বিতর্কিত জমির ওপর অবস্থিত বাবরি মসজিদের স্থাপনাটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। বাবরি মসজিদ ভাঙার পর ভারতের নানা প্রান্তে যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছিল তাতে তিন হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়। আজ রায় ঘোষণার সময় বিচারপতিরা ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের (আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া) একটি রিপোর্টও উল্লেখ করেছেন, যাতে বলা হয়েছিল বাবরি মসজিদের নিচে একটি স্থাপনা ছিল বলে প্রমাণ মিলেছে - তবে সেই কাঠামোটি ঠিক কীসের তা স্পষ্ট নয়। আরো পড়তে পারেন: 'ওখানে বাবরি মসজিদ থাকলেও কি এই রায় হত?' ফিরে তাকানো: '৯২ সালে বাবরি মসজিদ নিয়ে ঢাকায় যা ঘটেছে ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ভারতে ঐতিহাসিকরা মোটামুটি একমত যে, মুঘল আমলে বাবরের একজন সেনাপতি মীর বাঁকি ১৫২৮ সাল নাগাদ অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তবে এ দেশের হিন্দু সমাজের একটা বড় অংশ বিশ্বাস করেন, তাদের আরাধ্য দেবতা শ্রীরামচন্দ্রের জন্মস্থানের ওপরই ওই মসজিদ নির্মিত হয়েছিল। ভারতের ধর্মীয়-রাজনৈতিক ল্যান্ডস্কেপে বহু দশক ধরে সবচেয়ে বিতর্কিত ও রক্তক্ষয়ী ইস্যু হিসেবে চিহ্নিত হয়ে এসেছে এই বাবরি মসজিদ-রাম জন্মভূমি বিরোধ। শীর্ষ আদালতের মাধ্যমে সেই বিরোধের নিষ্পত্তির লক্ষ্যেই সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ শনিবার এই রায় ঘোষণা করে। এদিন রায় ঘোষণার পর অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্য জাফরিয়াব জিলানি জানিয়েছেন, এই রায়ের মধ্যে অনেক 'স্ববিরোধিতা' ও 'তথ্যগত ভুল' আছে বলে তারা মনে করছেন। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্য জাফরিয়াব জিলানি "আমরা এখন নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে স্থির করব আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে। সবাই একমত হলে আমরা রিভিউ পিটিশন দাখিল করব", জানিয়েছেন তিনি। এদিকে বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন এই রায়কে 'ঐতিহাসিক' বলে বর্ণনা করে একে স্বাগত জানিয়েছে। রায় ঘোষণার পর এদিন সুপ্রিম কোর্টে 'জয় শ্রীরাম' স্লোগান দিয়ে হিন্দু সংগঠনগুলোর সমর্থকদের জয়ধ্বনি দিতেও দেখা গেছে। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও শীর্ষস্থানীয় বিজেপি নেতা রাজনাথ সিং এদিনের রায়কে 'ল্যান্ডমার্ক জাজমেন্ট' বলে বর্ণনা করেছেন। দেশবাসীকে তিনি শান্তি ও সুস্থিতি বজায় রাখারও আহ্বান জানিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চে এর আগে টানা চল্লিশ দিন ধরে এই মামলার শুনানি হয়েছে। এদিনের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে ভারতের বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন প্রধান বিচারপতি ছাড়া বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা ছিলেন এস এ বোডবে, ওয়াই ভি চন্দ্রচূড়, অশোক ভূষণ ও এস আবদুল নাজির। অযোধ্যার বিতর্কিত ধর্মীয় স্থানটি যে উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে, সেখানে ইতিমধ্যেই নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত বারো হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। অযোধ্যায় কারফিউ জারি রয়েছে গত প্রায় দুসপ্তাহ ধরে। এদিন রায় ঘোষণার আগে গতকাল প্রধান বিচারপতি গগৈ গতকাল শুক্রবারই রাজ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উত্তরপ্রদেশের শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেছিলেন। উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক ও রাজস্থান-সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে আজ স্কুল-কলেজ সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ রাখা হয়েছে। শনিবার সকালে অযোধ্যার রাস্তায় শনিবার হওয়ার কারণে বেশির ভাগ সরকারি অফিসেও ছুটি। রায় ঘোষণার আগের রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে বলেছিলেন, "অযোধ্যার রায় কারও জয় বা কারও পরাজয় সূচিত করবে না।" "দেশের সামনে এই মুহুর্তে অগ্রাধিকার হল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা", এ কথাও মনে করিয়ে দেন তিনি। তবে এদিন রায় ঘোষণার ঠিক পর পরই তিনি পাঞ্জাবে ভারতের দিক থেকে ভারত-পাকিস্তান যৌথ উদ্যোগে নির্মিত কর্তারপুর করিডরের উদ্বোধন করেন। কিন্তু সেখানে তার ভাষণে তিনি অযোধ্যা রায়ের প্রসঙ্গ একেবারেই তোলেননি। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: ঘূর্ণিঝড় 'বুলবুল': উপকূলে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণের দায়িত্ব কার আ.লীগের যত সহযোগী সংগঠন: চাবিকাঠি কার হাতে ভারতের অযোধ্যাতে যে বিতর্কিত ধর্মীয় স্থানটি নিয়ে বহু বছর ধরে সংঘাত, সেখানে একটি হিন্দু মন্দির বানানোর পক্ষেই রায় দিয়েছে সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট। +text: ফারাক্কা বাঁধের নির্মাণ কাজ সম্প্রতি ভারতের বিহার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিতর্কিত ফারাক্কা বাঁধ সরিয���ে দেয়ার কথা বলেছেন। এই প্রথম একজন ভারতীয় রাজনীতিক এরকম মন্তব্য করলেন বটে কিন্তু শুরু থেকেই এ প্রকল্পের বিরুদ্ধে ছিলেন নদী বিশেষজ্ঞরা। ফারাক্কার প্রভাবে নদীর স্বাভাবিকতা হারিয়ে গঙ্গার উজানে বিহার ও উত্তর প্রদেশ এবং ভাটিতে সুন্দরবন পর্যন্ত পরিবেশ বিপর্যয়ের সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ থেকে ১৮ কিলোমিটার উজানে ভারতে গঙ্গা নদীতে বিতর্কিত ফারাক্কা ব্যারেজ চালুর পর গত চার দশকে যেটি গঙ্গা অববাহিকায় ব্যাপক পরিবর্তন ঘটিয়েছে। ফারাক্কা বাঁধের কারণে গঙ্গার উজানে বিপুল পরিমাণ পলি জমে প্রতিবছর বন্যা দেখা দিচ্ছে ভারতের বিহারসহ উত্তর প্রদেশের বিস্তীর্ণ এলাকায়। অন্যদিকে গ্রীষ্ম মৌসুমে পানি আটকে রাখার ফলে নদীর স্বাভাবিক গতি হারিয়ে ক্ষতির শিকার হয়েছে ভাটি অঞ্চলে বাংলাদেশ। ফারাক্কা বাঁধ এখন বিহারে প্রতি বছর বন্যার জন্য ফারাক্কা বাঁধকেই দায়ী করা হচ্ছে। বিহারে এবার বন্যাতেই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা অন্তত ২০ লাখ। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ফারাক্কার সমস্যা তুলে ধরে এ সমস্যার একটা স্থায়ী সমাধান চাইছেন বিহারে তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। পদ্মা নদীতে ৫০ বছরেরও বেশি সময় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন জয়রাম। ফারাক্কার কারণে বাংলাদেশে অনেক ক্ষতি হয়েছে বলে সব সময় বলা হয়ে থাকে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পর ফারাক্কার প্রায় সবগুলো গেট খুলে দেয়া হয়েছে। এর ফলে গত সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২০ লাখ কিউসেক পানি ঢুকেছে বাংলাদেশে। মঙ্গলবার রাজশাহীতে গিয়ে দেখা যায় উজান থেকে আসা পানির প্রচণ্ড স্রোত। শহরে টি বাঁধ হিসেবে পরিচিত পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক নম্বর গ্রোয়েনে ছোট ভাঙ্গন ধরেছে। যেটি রক্ষা করতে শত শত বালির বস্তা ফেলতে দেখা যায়। আমজাদ আলী পদ্মার তীরবর্তী খানপুর গ্রামের বহু বছর বসবাস করছেন। ফারাক্কা বাধ দেয়ার পর থেকে শীত আর বর্ষার পদ্মার পানির বিপরীত চিত্র দেখে আসছেন ষাটোর্ধ আমজাদ আলী। তিনি বলেন, "মনে করেন যখন পানির দরকার ফারাক্কায় তখন পানি দেয় না আর এখন ফারাক্কা ছেড়ে টেড়ে দিয়ে আরো কষ্ট দিচ্ছে।" বর্ষাকালে বন্যা আর ভাঙনে মোটামুটি অভ্যস্ত পদ্মাপাড়ে আমজাদ আলীর মতো এ জনপদের সবাই। "শীতের কালে যখন গম বুনবো শ্যালো দিয়ে পানি দিব শ্যালোতে দেখা যায় পানি পাইছে না। তখন টিউবঅয়েলে পানি পাওয়া যায় না, এরকম হয়ে যায়। নদীর পানি নিচে চইলে যায়। আবার এখন দেখা যাইছে যে হটাত পানি এসে সব ডুবিয়ে দিল।" বাংলাদেশের নদীগবেষণা ইনস্টিটিউট ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী ম ইনামুল হক পদ্মার আরো ভাটিতে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বাংলাদেশে গঙ্গার পানি পরিমাপ করা হয়। এ এলাকায় পদ্মা নদীতে ৫০ বছরেরও বেশি সময় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন জয়রাম। ফারাক্কা বাধের আগে ও পরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জয়রাম বলেন, "৪০-৫০ বছর আগে যখন নদীতে পানি ছিল তখন রেগুলার মাছ পাতাম। এখন ১০ কেজি ১৫ কেজি মাছ ধরতে তামাম দিন খাটতে হচ্ছে।" জয়রাম জানান, পদ্মায় গরমকালে পানি এতটাই শুকিয়ে যায় যে তাদের জীবিকা চালানোই কঠিন হয়ে পড়ে। বছরে দুইমাস কোনো মাছই ধরা পড়েনা বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী এ মৌসুমে সর্বোচ্চ পানি এসেছে ২০ লক্ষ কিউসেক। আর গ্রীষ্ম মৌসুমে পানির সর্বনিম্ন প্রবাহ ছিল ১৫,৩০০ কিউসেক। বন্যা দেখা দিচ্ছে ভারতের বিহারসহ উত্তর প্রদেশের বিস্তীর্ণ এলাকায়। বাংলাদেশের নদীগবেষণা ইনস্টিটিউট ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী ম ইনামুল হক বলেন, ফারাক্কা বাধ দেয়ার আগে শুষ্ক মৌসুমে পানির প্রবাহ ছিল ৬০ থেকে ৮০ হাজার হাজার কিউসেক। "ফারাক্কা ওদের যে ডাইভারশন ক্যানেল, ব্যারেজের মাধ্যমে তারা ৪০ হাজার কিউসেক পানি সরিয়ে নিতে পারে। তো সেটি সরিয়ে নেয়ার পরে যেটি থাকে সেটি পায় বাংলাদেশ।" গঙ্গা চুক্তিতে অন্তত ২৭ হাজার কিউসেক পানি পাওয়ার কথা রয়েছে। তবে চুক্তির আগে অনেক সময় ১০ হাজার কিউসেকেরও কম পানি এসেছে বলে জানান মিস্টার হক। তিনি বলেন, "বিশেষ করে ইলিশ মাছ এবং চিংড়ি মাছের বিরাট ক্ষতি হয়েছে, তাদের প্রজণনে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে সংখ্যা কমে গেছে এছাড়া অন্যান্য মাছেরও ক্ষতি হচ্ছে। আর উপকূল এলাকায় মানুষ একটা মিষ্টি পানির ওপর নির্ভরশীল যাদের জীবন, সেটা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।" বলছিলেন মিস্টার হক। বিহার মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের প্রস্তাবের প্রেক্ষাপটে ফারাক্কা ইস্যুতে নতুন আলোচনা হতে পারে বলেও মনে করেন মিস্টার হক। "নীতিশ কুমার বলছেন এটা তুলে দিতে। তুলে দেয়া যাবে না। কারণ সেটা একটা স্ট্রাকচার যার ওপর রেল আছে, রোড আছে।আমরা একটা বলতে পারি যে, আমরা নদীর যে স্বাভাবিক প্রবাহ সেটাকে বাধা দেয��ার বিরোধী। এবং ১৯৯৭ সালের জাতিসংঘ কনভেনশন এটা বাধা দেয়ার বিরোধী। অতএব এই গেটগুলো তুলে দাও, গেট গুলো খুলে দাও"। (এই প্রতিবেদনটি দেখতে পাবেন চ্যানেল আইতে আজ রাত ৯:৩৫ বিবিসি বাংলার সরাসরি অনুষ্ঠান প্রবাহ তে)। +text: গবেষণা বলছে, বাংলাদেশে পুরুষদের তুলনায় নারীরা ইন্টারনেট ব্যবহারে অনেক পিছিয়ে রয়েছে যেমন সুনামগঞ্জের সোনাপুরের রুনা বেগম, তিনি সম্মান চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী। মাত্র চার বছর হল মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে শুরু করেছেন তিনি। তবে সেই ফোনে ইন্টারনেট নেই। তিনি জানান, জীবনের প্রথম ও একমাত্র এই মোবাইল ফোনটি তিনি পেয়েছেন দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ের কাছ থেকে। জরিপে বলা হচ্ছে মোবাইল ফোন এবং মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নারীরা দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছে। এর কারণ হিসেবে শিক্ষা, দারিদ্র্য এবং পশ্চাৎপদতার মতো একাধিক কারণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মিজ রুনার সাথে কথা বলে তার একটা দৃষ্টান্ত পাওয়া গেল। তার কথায়, পড়াশুনা করতে বাড়ি থেকে অনেক দূরে যেতে হয় বলে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেয়ার জন্যই মোবাইল ফোন ব্যবহারে বাধা দেয় নি তার পরিবার। মিজ রুনা বলেন, "আমরা যে এলাকায় থাকি সেখান থেকে নদী পার হয়ে সদরে কলেজে আসতে হয়। যাতায়াতে দূরত্বের একটা সমস্যা আছে। যেজন্য মোবাইল ব্যবহারে পরিবারের কেউ নিষেধও করে নাই।" তবে পুরনো হওয়ার কারণে এটিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন না তিনি। রয়েছে, ইন্টারনেটের খরচ বহনের বিষয়টিও। "ইন্টারনেট ব্যবহার করার প্রবলেম হচ্ছে নেটওয়ার্ক প্রবলেম। তারপরে ফোন তো অনেক বছর হইছে। ফোনেও সমস্যা," তিনি বলেন। মিস রুনা বলেন, "স্টুডেন্ট মানুষ তো আমি। তাই সব সময় ইন্টারনেটের যে খরচ সেটা যোগার করা আমার পক্ষে সম্ভব হয় না।" আরো পড়ুন: যেভাবে ঘরে বসেই আয় করতে পারেন বাংলাদেশের নারীরা সাইবার হামলার শিকার বেশি নারীরা: প্রতিকার কী? 'একবারই কমেন্ট করেছিলাম একটি বাংলা পত্রিকার নিউজে. তারপরে গালাগালির বন্যা!' অনেক নারী বলছেন, তারা যেকোনো মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রে কিংবা পাবলিক পোস্টে কমেন্টের ক্ষেত্রে নানা ধরনের হয়রানির মুখে পড়েন, নানা মন্তব্যের শিকার হতে হয়। (ফাইল ফটো) রুনা ছাড়াও বাংলাদেশের আরও অনেক নারী রয়েছেন যাদের কাছে, ইন্টারনেট তো দূরের কথা মোবাইল ফোন ব্যবহারটাও বেশ ��ীমাবদ্ধ। এমনই একজন তানিয়া বেগম। তিনি বলেন, "মোবাইল কেনার সামর্থ্য নাই আমার। আর মোবাইল ফোন দিয়ে আমি কি করবো? আমার বাবা-মা, ভাই বোন সবাই আমার সাথে থাকে।" দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মোবাইল ফোন এবং ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নারীদের পিছিয়ে থাকার হার ব্যাপক। যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংস্থা গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশন-জিএসএমএ এক গবেষণায় বলছে, বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারে নারী-পুরুষের লিঙ্গ বৈষম্য বা জেন্ডার গ্যাপ ৩৩ ভাগ। আর মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই হার ৫৮ ভাগ। গবেষণায় বলা হচ্ছে, মোবাইল ফোন কেনার সক্ষমতা থাকে না বেশিরভাগ নারীর। এছাড়া অনেকেই এটিকে তেমন প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করেন না। মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হলে, দরকার হয় সাক্ষরতা এবং ডিজিটাল দক্ষতার। বাংলাদেশে শহর অঞ্চল ছাড়া গ্রামাঞ্চলে নারীদের মধ্যে শিক্ষার হার কম হওয়ায় তাদের মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারের হার কম। তবে শিক্ষিত হওয়ার পরও নিরাপত্তা ও সুরক্ষার কারণেও ইন্টারনেট ব্যবহার থেকে বিরত থাকেন অনেকে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: সাংবাদিককে দেয়া দুদকের চিঠির ভাষা: আইন কী বলে মাদকের বিরুদ্ধে কি যথেষ্ট সচেতনতা তৈরি হয়েছে আপনার বাড়ির কোথায় কোথায় সবচেয়ে বেশি জীবাণু বাংলাদেশ, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের সেমিফাইনালের হিসাব সাদেকা হালিম বলছেন ফেসবুকে ছবি বা ভিডিওকে কেন্দ্র করে এ ধরনের হয়রানি বেশি হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, "শহরাঞ্চলে পুরুষের তুলনায় নারীদের মোবাইল ফোন ব্যবহার ও এতে ইন্টারনেট ব্যবহারের হার কম। বাজার অর্থনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ায় বাইরে কাজের পাশাপাশি সংসারের কাজও তারা করছে। ফলে সময় কম পাচ্ছে।" "আর গ্রামাঞ্চলে নারীদের হাতে মোবাইল ফোন তেমনিভাবে পৌঁছায়নি। কারণ এর জন্য ক্রয়ক্ষমতা থাকতে হবে।" "পরিবারে একটি মোবাইল ফোন থাকলেও সেটি থাকে একজন পুরুষের কাছে। যা ব্যবহার করতে হলে নারীকে অপেক্ষা করতে হয়," - বলেন তিনি । ড. সাদেকা হালিম বলেন, "ইন্টারনেট যেটা আধুনিক জায়গা নারীদের জন্য সেখানে শিক্ষার ব্যবস্থা থাকতে হবে।" "তার কোন প্রশিক্ষণ আছে কিনা, সে কোন পাঠ গ্রহণ করেছে কিনা সে ইন্টারনেট চালাতে পারছে কিনা - সেটার উপরও নির্ভর করে।" তিনি বলেন, "আমরা অভিভাবকরা মনে করি, পুরুষ ছেলের হাতে আমরা খুব তাড়াতাড়ি মোবাইল ফোন দিতে পারি। কিন্তু সে তুলনায় একজন নারীকে দিতে পারছি না।" "অভিভাবকরা মনে করেন যে, নারীদের কেউ অহেতুক জ্বালা-যন্ত্রণা করতে পারে, তারা কারো সাথে চলে যেতে পারে কিংবা পড়াশুনায় অমনোযোগী হতে পারে।" "এগুলো ঠেকাতে সার্বিকভাবে সমাজে সচেতনতা প্রয়োজন। পুরুষের হাতে ফোন থাকবে, কিন্তু নারীদের হাতে থাকবে না - সেটা হবে না," তিনি বলেন। তার মতে, "স্কুল-কলেজের মতো প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সামাজিকীকরণের প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনতে হবে।" মোবাইল ফোন ও এতে ইন্টারনেট ব্যবহারে এই লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে সরকারের কি কি প্রচেষ্টা রয়েছে - এমন প্রশ্নে কথা হয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা সারওয়ার জাহানের সাথে। তিনি বলেন, "মেয়েদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য শিপআওয়ার নামে একটি প্রকল্প রয়েছে। যেখানে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।" সাইবার হামলার শিকার বেশি নারীরা ৫২% অভিযোগ নারীদের থেকে ৩০% নারী জানেনা কীভাবে আইনি ব্যবস্থা নিতে হয় ৭৪% নারীদের বয়স ১৮-৩০ বছরের মধ্যে ২৫% নারী মনে করে অভিযোগ করে লাভ হবে না দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ ছাড়াও এতো বড় বৈষম্যের হার রয়েছে পাকিস্তানে। তারপরেই আছে ভারত। তবে, চীনে এই হার আশ্চর্যজনকভাবে কম। দেশটিতে মোবাইল ফোন ব্যবহারে জেন্ডার গ্যাপ শূন্যের কোটায়। আর মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে জেন্ডার গ্যাপ মাত্র ১%। জিএসএমএ-এর প্রতিবেদন বলছে, মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়িয়ে লিঙ্গ বৈষম্য কমানো গেলে, ২০২৩ সালের মধ্যে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে ৭০ কোটি ডলার জিডিপি বাড়ানো সম্ভব। বাংলাদেশের অনেক নারীরই মোবাইল ফোন কেনার সক্ষমতা নেই, অন্যের উপহার দেয়া ইন্টারনেট-বিহীন ফোন ব্যবহার করেন অনেকেই, আবার এমন নারীও আছেন - যারা এটির তেমন প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করেন না। +text: ২.০ ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে ২৯শে নভেম্বর বৃহস্পতিবার এই ছবিতে অভিনয় করেছেন রজনীকান্ত ও অকশয় কুমার। গত কয়েকদিন ধরে ছবিটি নিয়ে এতো বেশি আলোড়ন তৈরি হয়েছে যে ধারণা করা হচ্ছে ভারতে সর্বকালের ইতিহাসে এটিই হবে সবচেয়ে ব্যবসা সফল ছবি। রজনীকান্তের জনপ্রিয়তা শু���ু তামিলনাডু ও দক্ষিণ ভারতের মধ্যেই সীমিত নেই। বরং তার এই জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছে উত্তর ভারত থেকে শুরু করে জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো আরো কিছু দেশেও। গত ৩০ বছর ধরে তামিল চলচ্চিত্র জগতের পর্দা কাঁপাচ্ছেন রজনীকান্ত, যিনি তার ভক্তদের কাছে রজনী হিসেবেই অনেক বেশি পরিচিত। উত্তর ভারতেও রয়েছে তার বহু ভক্ত। চলচ্চিত্র সমালোচকদের মতে সব বয়সের দর্শকই তার ছবি দেখতে ভালোবাসেন। কিন্তু কিভাবে তিনি তার এই ইমেজ তৈরি করলেন? ভারতের প্রখ্যাত একজন চলচ্চিত্র সমালোচক স্যারা সুব্রাম্যানিয়াম বলছেন, "১৯৮০ ও ১৯৯০ এর দশকে ভারতীয় তরুণদের কাছে সিনেমা ও ক্রিকেটের মতো খুব কম বিষয়ই ছিল যাতে তারা আকৃষ্ট হতে পারতো। ভারতীয় সিনেমায় সুপার হিরোর যে শূন্যতা ছিল রজনী সেটা পূরণ করতে পেরেছিলেন।" রজনীকান্তের জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছে ভারতের বাইরেও। আরো পড়তে পারেন: সৌদি আরবে নিষিদ্ধ সিনেমা হঠাৎ কেন বৈধ হয়ে গেল? উৎসবের সময় বিদেশি সিনেমার কেন বিরোধিতা করছে শিল্পীরা উৎসবের সময় আমদানি করা সিনেমা চলবে না "ছবি মুক্তি পাওয়ার প্রথম দিনের প্রথম শোতে রজনীর ছবি দেখতে পারার বিষয়টা একটা দারুণ উত্তেজনার ব্যাপার। সেখানকার পরিবেশটাই থাকে অন্যরকমের।" তিনি বলেন, "লোকজন তার সিনেমা দেখতে ভালোবাসেন তার আরো একটা কারণ হচ্ছে তিনি যেভাবে সংলাপ ছুঁড়ে দেন সেটা। এই কাজটা তিনি যেভাবে ও যতোটা দক্ষতার সাথে করতে পেরেছেন সেরকম আর কেউ করতে পারেনি।" "তার শরীরের ভাষাও অন্যদের চেয়ে আলাদা এবং এটা তার একেবারে নিজস্ব একটি স্টাইল। একারণে তামিলনাডুকে তার প্রচুর ভক্ত তৈরি হয়েছে। এর মাধ্যমে ভাষার সীমানা অতিক্রম করে তিনি পৌঁছে গেছেন দেশের অন্যান্য প্রান্তে অন্যান্য ভাষার মানুষের কাছেও," বলেন সুব্রাম্যানিয়াম। সমালোচকরা বলেন, অভিনয়ের সময় রজনী তার শরীরকে এমনভাবে ব্যবহার করতে পারেন যেটা তাকে আলাদা একটা বৈশিষ্ট্য দিয়েছে। তার এই বডি ল্যাঙ্গুয়েজকে বলা হচ্ছে, 'রজনী স্টাইল', যা শিশুরাও নকল করতে উৎসাহ বোধ করে। চলচ্চিত্র সমালোচকরা বলছেন, কিছু কিছু ছবিতে তার অভিনয় অবিশ্বাস্য রকমের। এজন্যে তাকে "নায়কদেরও নায়ক" বলা হয়। বলিউড এবং টলিউডের অনেক তারকাও রজনীর ভক্ত। শাহরুখ খান তার 'লুঙ্গি ড্যান্স' গানটি উৎসর্গ করেছেন রজনীকান্তকে। শুধু ব্যবসায়িক সাফল্যের উদ্দেশ্যে তিনি এটা কর���ন নি। তার জনপ্রিয়তার কথা চিন্তা করেই শাহরুখ খান সেটা করেছিলেন বলে বলছেন স্যারা সুব্রাম্যানিয়াম। তবে তিনি এও বলেছেন, রাজনীতিতে যোগ দেওয়া এবং তার কিছু কিছু বিতর্কিত বক্তব্যের কারণে রজনীর ভক্তরা তাকে আগের চোখেই দেখে কিনা সেটা নিয়ে একটা সন্দেহ আছে। "ভক্তরা তার এসব কথাবার্তা পছন্দ করে কিনা সেটা খুব একটা পরিষ্কার নয়।" ধারণা করা হচ্ছে, ২.০ ছবিটি হবে ভারতের সর্বকালের সবচেয়ে ব্যবসা সফল ছবি। তিনি বলেছেন, "ভারতের অন্যত্র এবং বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় ২.০ ছবিটি নিয়ে প্রচুর কথাবার্তা হলেও তামিলনাডুতে ছবিটি দেখার জন্যে সেরকম প্রিবুকিং চোখে পড়েনি। সোশাল মিডিয়াতেও সেরকম কিছু হয়নি।" রজনীকান্তের পরবর্তী ছবি পেত্তা পরিচালনা করবেন যে তরুণ পরিচালক কার্তিক সুব্বুরাজ, তিনি মন্তব্য করেছেন, "রজনীকে নিয়ে ছবি বানানো আমার একটা স্বপ্ন। আরো অনেকের মতো আমিও তার ছবি দেখে বড় হয়েছি।" "তিনি যে ভারতে বড় বড় তারকাদের একজন সেটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। বহু বহু বছর ধরেই তিনি দর্শকদেরকে তার যাদু দেখিয়ে চলেছেন। তার নিজস্ব স্টাইল, ম্যানারিজম, সংলাপ এসবই তার ভক্তদেরকে মুগ্ধ করছে।" তিনি বলছেন, তার মতো আরো একজনকে খুঁজে পাওয়া কঠিন যিনি এতো দিন ধরে জনপ্রিয়তার ধরে রাখতে পেরেছেন। "এই যশ ও খ্যাতির বাইরেও তিনি একজন সাধারণ মানুষ।" অন্ধ্র প্রদেশ এবং তেলেঙ্গানাতে তিনি অনেক জনপ্রিয়। তামিল ভাষায় তৈরি তার বহু ছবি তেলেগু ভাষায় অনুবাদ হওয়ার পর সেগুলোও প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। শুধু ভারতেই নয়, মালয়েশিয়া এবং জাপানেও তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। চলচ্চিত্র সমালোচকরা বলছেন, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে প্রবাসী তামিলদের কারণে সেসব দেশে তার জনপ্রিয়তা তৈরি হয়েছে। আরো পড়তে পারেন: বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর কী ধরণের সরঞ্জাম আছে? 'তাদের কান্না আমি কখনোই ভুলবো না' কে এই নতুন টেস্ট ক্রিকেটার সাদমান সারা বিশ্বের প্রায় দশ হাজার সিনেমা হলে আজ ২৯শে নভেম্বর, বৃহস্পতিবার মুক্তি পাচ্ছে ২.০ নামের একটি ভারতীয় চলচ্চিত্র। তামিল, তেলেগু, হিন্দি এবং আরো বহু ভাষায় এই সিনেমাটি তৈরি করা হয়েছে। +text: মোটর সাইকেলের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। অ্যাপ ভিত্তিক হওয়ায় একদিকে যেমন দর কষাকষির ঝক্কি নেই। তেমনি বিভিন্ন অফারের আওতায় তুলনামূলক কম খরচে গন্তব্যে পৌঁছানো য��য় বলে তরুণ সমাজে নির্ভরতার জায়গায় পরিণত হয়েছে এই অ্যাপগুলো। আর সে কারণেই প্রতিষ্ঠানগুলোর আওতাধীন মোটরসাইকেলের সংখ্যাও বাড়ছে সমান তালে। তবে সম্প্রতি কয়েকটি দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ভাবিয়ে তুলেছে এই মোটর বাইক ব্যবহারের নিরাপত্তা প্রসঙ্গটি। রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সানজানা নওরিন প্রায়ই মোটর বাইক রাইডে অফিসে আসেন। বাইকের ফিটনেস সেইসঙ্গে হেলমেট না দেয়াসহ তাদের সেবা নিয়ে অসন্তুষ্টির কথাও জানান তিনি। মিসেস নওরিন বলেন, "কিছু কিছু বাইকের অবস্থা খুবই খারাপ থাকে। আবার রাইডার নিজেরা হেলমেট পরলেও আমাদের জন্য কোন হেলমেট রাখে না। কেউ যদি রাখেও সেটার এমনই অবস্থা থাকে যে ওটা আর পরার মতো না। হেলমেট না থাকার কারণে ক্যান্টনমেন্ট রুটও ব্যবহার করতে পারিনা আমি।" গতকাল এক রাইড অ্যাপ ব্যবহারকারী এয়ারপোর্ট রোডে কাছে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। সম্প্রতি মোটর রাইড ব্যবহার করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন সংগীত শিল্পী নাদেদজা সুলতানা আর্নিক। এসময় তিনি চালকদের দক্ষতাসহ তাদের বেপরোয়া গতি এবং চালকদের অসচেতনতাকে দায়ী করেন। মিজ আর্নিক বলেন, "অনেকে কোন রকম বাইক চালাতে পারলেই রাস্তায় নেমে যান। অনেক বেপরোয়াভাবে চালান। আস্তে যেতে বললেও লাভ হয়না। আমি অ্যাক্সিডেন্টের পর রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানে লিখিত অভিযোগ করেছি। পরে তারা কোন ব্যবস্থা নিয়েছে কিনা জানিনা।" রাইড ব্যবহারের এই বিরূপ অভিজ্ঞতার ব্যাপারে কোথায় জানাতে হবে, কিভাবে জানাতে হবে এমন বিষয়ে বেশিরভাগেরই কোন ধারণা নেই। এসব অ্যাপ ঘেঁটে যাত্রীদের অভিযোগ বা প্রয়োজনীয় সাহায্যের জন্য কোন হটলাইন নম্বর পাওয়া যায়নি। এজন্য যাত্রীরা সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে তাদের সমস্যা বুঝিয়ে বলার সুযোগ পাচ্ছেননা। এই তীব্র যানজট ঢাকা শহরের প্রায় রোজকার ছবি। এ ব্যাপারে পাঠাওয়ের জনসংযোগ কমকর্তা নাফিউল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, সার্ভিসটির ওয়েবসাইটে তাদের হেল্প লাইন নাম্বার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যাত্রীদের নিরাপত্তার দিকটি বিবেচনায় চালক নিয়োগের ক্ষেত্রে তারা কি নীতিমালা মেনে চলছে এমন প্রশ্ন রাখা হলে মিস্টার ইসলাম জানান, "চালকদের বৈধ লাইসেন্স, মোটর সাইকেলের ফিটনেস এবং এটি চালানো দক্ষতা পরীক্ষার ভিত্তিতে আমরা নিয়োগ দিয়ে থাকি। প্র���্যেককেই হেলমেট ব্যবহার করতে এবং যাত্রীকে হেলমেট সরবরাহ করতে বলা হয়। এছাড়া আমাদের বিশেষ টিম জিপিএস ট্র্যাকিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে রাইডারদের নজরে রাখে।" তবে সরেজমিনে অনেক নীতিমালার কোন প্রয়োগ দেখা যায়না। এক্ষেত্রে গ্রাহকদের রেটিংয়ের ভিত্তিতে রাইডারদের পারফর্মেন্স যাচাই বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিনি। "কোন রাইডারের রেটিং বারবার খারাপ আসলে, কেউ পর পর তিন মাস যাত্রীকে হেলমেট না দিলে, আবার রাইডার যে মোটর সাইকেল দেখিয়ে নিবন্ধন করেছে সেটার পরিবর্তে অন্য কোন মোটর বাইক ব্যবহার করলে তাদের নিবন্ধন বাতিল করে দেয়া হয়।" তবে লাইসেন্স যাচাই বাছাই যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক ডক্টর মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, এই রাইডগুলোকে একটি নীতিমালার আওতায় আনা জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, "কেউ ব্যক্তিগত প্রয়োজনে যে লাইসেন্স ব্যবহার করে সেটা এইসব অ্যাপের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হওয়া উচিত নয়। কেননা এখানে অনেক পেশাদারি চালক আছেন। তাদের সেই বিশেষায়িত লাইসেন্সের প্রয়োজন। এছাড়াও চালকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা যাচাইয়ের মাধ্যমে তাদের নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। কোন চালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে সেগুলো খতিয়ে দেখাও প্রয়োজন এবং এই দায়িত্ব নিতে হবে সংশ্লিষ্ট অ্যাপ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে। সরকার সংশ্লিষ্টদেরও উচিত বিষয়গুলো তদারকি করা।" আড়াই শতাধিক নারী বাইকার দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ঢাকার রাস্তা। তবে এক্ষেত্রে অ্যাপ ব্যবহারকারীদের সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। মি. হোসেন বলেন, "সবার আগে দেখে নিতে হবে অ্যাপে যে লাইসেন্স নম্বর দেখানো সেটা বাইকের সঙ্গে মিলছে কিনা। চালককে বাইরে থেকে দেখে বা কথা বলে বুঝতে হবে তিনি মোটর বাইক চালানোর অবস্থায় আছেন কিনা। বাইকের ফিটনেস ভালো না হলে এবং হেলমেট ছাড়া বাইকে ওঠা ঝুঁকিপূর্ণ।" প্রয়োজনে চালকের লাইসেন্স পরীক্ষা করারও পরামর্শ দেন তিনি। সম্প্রতি চালক ও যাত্রীদের বিনামূল্যে বীমা সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে উবার। তাদের বীমা নীতি অনুযায়ী, রাইড ব্যবহারের সময় যদি কোন দুর্ঘটনায় উবার ব্যবহারকারী বা চালক মৃত্যুবরণ করেন, স্থায়ী পঙ্গুত্ব বরণ করেন অথবা হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তাহলে তাদের এই ফ্রি বীমার সুবিধা দেয়া হবে। এই সুবিধার আওতায় দুর্ঘটনায় উবার ব্যবহারকারীর মৃত্যু হলে ২ লাখ টাকা, স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে গেলে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা এবং হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হলে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। তবে এই বীমা সেবার ব্যাপারে পাঠাও-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা প্রথম ১,০০০ চালককে বীমার আওতায় এনেছে। এছাড়া যাত্রী ও বাকি চালকদের এর আওতায় আনার কাজ চলছে। এদিকে ব্যক্তিগত মোটরযান ভাড়ায় চালানোর বিষয়টিকে একটি বিধিমালার আওতায় আনতে রাইড শেয়ারিং সার্ভিস নীতিমালার খসড়া অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। এই নীতিমালাকে গ্রাহকরা ইতিবাচকভাবে দেখলেও এতে যেন সেবার সহজলভ্যতা এবং ভাড়ায় কোন প্রভাব না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখার দাবি জানিয়েছেন তারা। আরো পড়তে পারেন: ঢাকায় বেপরোয়া মোটর সাইকেল চালানো থামছে না ফেসবুক-গুগল-ইউটিউবে ব্যবসার ওপর করের প্রস্তাব চীনে বিভিন্ন শহরজুড়ে কেন বাইসাইকেলের পাহাড়? শহরের অসহনীয় যানজট ঠেলে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর কারণে রাইড শেয়ারিং অ্যাপে মোটর বাইক ব্যবহারের জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলছে। +text: নিজ পরিবারেই নির্যাতনের শিকার হন নারীরা। মিসেস আক্তারের ভাষায়, তার 'সুখের সংসার' হঠাৎ করেই এলোমেলো হয়ে যায়। কারণ, তার স্বামী অফিসের এক নারী কলিগের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। "আমি হঠাৎ করেই দেখলাম প্রায় প্রতি সপ্তাহেই সে শুক্রবার-শনিবারে বাইরে থাকতে শুরু করেছে।" তিনি বলেন, "বৃহস্পতিবারে অনেক রাত করে বাসায় ফিরছে। আগে কখনো সে এ রকম করেনি। সংসারে ঠিকমতো খরচ দিচ্ছে না। এরপরই আমি তার পরকীয়া প্রেমের বিষয়টি আবিস্কার করি।" "একদিন তার গাড়িতে আমি নতুন একটা মোবাইল খুঁজে পাই। সেই মোবাইল দিয়ে ও লুকিয়ে লুকিয়ে মেয়েটার সঙ্গে কথা বলতো। এমনকি ওরা ভায়াগ্রা ট্যাবলেট খেয়ে কিভাবে ফিজিক্যাল রিলেশন করেছে সেগুলোও চ্যাটিংয়ে আলোচনা করতো।" মিসেস আক্তার বলছেন, তিনি যখন এর প্রতিবাদ করেছেন তখন থেকেই মূলতঃ তার উপর স্বামীর অত্যাচার শুরু হয়। মারধর, গালাগালি, সংসারের খরচ বন্ধ করে দেয়াসহ নানারকম অত্যাচার হয়েছে তার উপর। "সে পুরুষ মানুষ এবং অনেক টাকা বেতন পায়। আমি কিছুই না। সে জাস্ট এটাই বোঝায় আমাকে। এবং তার ভাবভঙ্গি হচ্ছে, আমি যা ইচ্ছা করবো, পারলে তুই কিছু করে দেখা।" "আমি এসব কথা পরিবারকে বলেছি, ওদে�� পরিবারকেও বলেছি। ওরা বুঝিয়েছে, কিন্তু কোন কাজ হয়নি। মামলা করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সবাই নিষেধ করেছে। দুটো বাচ্চা নিয়ে কোথায় যাবো তাই নির্যাতন সহ্য করেই এখনো সংসার করে যাচ্ছি।" বাংলাদেশে স্বামীর ঘরে কিংবা নিজ পরিবারে নারীদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরেই এমন অবস্থা চললেও অনেকক্ষেত্রে নির্যাতিতরাই এর প্রতিবাদে খুব একটা আগ্রহ দেখান না। কিন্তু বাংলাদেশে যেসব নারী এসব নির্যাতনের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চান, তারাও পরিবার কিংবা সমাজকে পাশে পাচ্ছেন না ঠিক মতো। আরো পড়ুন: তিরস্কারমূলক শব্দ যেভাবে জব্দ করে নারীকে বাংলাদেশে নারী নির্যাতনের মিথ্যা মামলা কতটা হয়? আদালতে আড়াই মাসের শিশু, আইন বদলানোর আদেশ 'দুটো বাচ্চা নিয়ে কোথায় যাবো তাই নির্যাতন সহ্য করেই সংসার করে যাচ্ছি' 'নিজের পরিবারই পক্ষে ছিল না' তামান্না নুপুর নামে আরেকজন নারীর সঙ্গে কথা হয়। বছরের পর বছর স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে তিন বছর আগে তিনি স্বামীকে ডিভোর্স দিয়েছেন। এখন গাজীপুরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তামান্না নুপুর জানাচ্ছেন, বিয়ের পর থেকেই পাঁচ বছর ধরে তিনি স্বামীর পরিবারে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। ছোটখাট বিষয়ে কিংবা কারণে-অকারণে তাকে মারধোর করা হতো। সিগারেট দিয়ে একাধিকবার তার শরীরে ছ্যাকা দেয়ার ঘটনাও আছে। "ওদের আসলে আমাকে ভালো লাগতো না কোন কারণে। এজন্যই অত্যাচারের অজুহাত খুঁজতো। বাসায় জানাইছি। তারা বলে, সহ্য করো।" মিজ নুপুর বলছেন, "কতদিন আর সহ্য করবো? যখন মাত্রা ছাড়ায় গেলো, শশুরবাড়ির সবাই নির্যাতন করতে শুরু করলো তখন আর থাকতে পারলাম না। নিজের সিদ্ধান্তেই তালাক দেই। আমার নিজের পরিবার বলছে, তারা আমার দায়িত্ব নিতে পারবে না।" পরিবার থেকে সাহস না পেয়ে স্বামীর নির্যাতনের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেননি তামান্না নুপুর। তামান্না নুপুর বলছেন, তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার বাবা-মা রাজি হননি। "বাবা বললো, মামলা করে কী হবে? দরকার নাই। এখন পরিবার যদি হেল্প না করে, তাহলে আমার একার পক্ষে তো সম্ভব না। আমি তো থানা-পুলিশের ব্যাপার কিছুই বুঝি না।" বাংলাদেশে পরিবারের মধ্যে বিশেষত: স্বামীর মাধ্যমে নারী নির্যাতনের যে চিত্র তা বেশ ভয়াবহ। শারীরিক, মানসিক, আর্থিকসহ বিভিন্ন ধরণের নির্যাতনে�� মধ্যেই দিনের পর দিন অনেকেই জীবন পার করলেও এ নিয়ে অভিযোগ বা প্রতিবাদের চিত্র খুব একটা দেখা যায় না। এ নিয়ে সচেতনতাও কম। আবার নিজ পরিবারেও নির্যাতনের মুখে পড়েন অনেকে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) নারী নির্যাতনের চিত্র নিয়ে যে জরিপ প্রকাশ করে সেখানে দেখা যায় বাংলাদেশে ৭২.৬ শতাংশ বিবাহিত নারীই কোন না কোনভাবে স্বামীর দ্বারা নির্যাতনের শিকার হন। এর মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের হার ৪৯.৬ শতাংশ। জরিপে দেখা যাচ্ছে, যারা নির্যাতনের শিকার হয় তাদের ৭২.৭ শতাংশই নির্যাতনের ঘটনা বাইরের কাউকে বলেন না। আর থানা-পুলিশ পর্যন্ত অভিযোগ পৌঁছান মাত্র ১.১ শতাংশ নির্যাতিত নারী। অর্থাৎ বেশিরভাগই মুখ বুজে অত্যাচার সহ্য করে যাচ্ছেন। কিন্তু এরকম পরিস্থিতি কেন হলো? বাংলাদেশে বিবাহিত নারীদের বেশিরভাগই স্বামীর নির্যাতনের বিরুদ্ধে সহজে মুখ খোলেন না। বাংলাদেশে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির পরিচালক তৌহিদা খন্দকার বলছেন, "যাদের উপর সহিংসতাটা হয় তারা আসলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জানে না এর প্রতিকারে কোথায়, কার কাছে যেতে হবে।" "এমনকি এগুলো যে নির্যাতন, সহিংসতা সেটাও অনেকে বোঝেন না বা সেই বার্তাটা তাদের কাছে নেই। পুলিশের কাছে যে যাবে, সেটা ফেইস করার মতো কোয়ালিটিও অনেকের নাই।" তবে যারা আইনগত পদক্ষেপ নিতে চান, তাদেরও বিচার পেতে আছে নানা ভোগান্তি। বিচারে দীর্ঘসূত্রতা আছে। "আবার মামলা দায়েরের পর অভিযোগ প্রমাণের দায়িত্ব ভিক্টিমকেই নিতে হয়। সাক্ষী-সাবুদও তাকেই জোগাড় করতে হয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটা খুবই কঠিন।" এসব জটিলতা জানার পরে অনেকেই মামলা করতে চাননা বলেই মনে করেন তৌহিদা খন্দকার। বলা হচ্ছে, নির্যাতনের বিরুদ্ধে সবার আগে সোচ্চার হতে হবে নির্যাতনের শিকার নারীদেরকেই। কিন্তু এর জন্য যেরকম পারিবারিক, সামাজিক ও আইনী বাস্তবতা দরকার বাংলাদেশে তার ঘাটতি আছে। আয়েশা আক্তার (ছদ্মনাম)। পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এই নারী বিশ বছর আগে ভালোবেসে যাকে বিয়ে করেছিলেন, ১৫ বছর পর সেই ভালোবাসার মানুষেরই ভিন্ন এক রূপ আবিস্কার করেন তিনি। +text: ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশে এসেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলা নোবেল পুরস্কার বিজয়ী নেলসন ম্যান্ডেলা বাংলাদেশে এসেছিলেন ১৯৯৭ সালের ২৫শে মার্চ। বাংলাদেশের স্বাধীনতার রজত জয়ন্তী ��পলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাকেসহ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাত আর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট সুলেমান ডেমিরেল। সেটাই ছিল বাংলাদেশে তার প্রথম এবং শেষ সফর। ঢাকায় হোটেল শেরাটনে নেলসন ম্যান্ডেলাকে গান শুনিয়েছিলেন ফকির আলমগীর ফিলিস্তিন আর তুরস্কের দুই নেতার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলা বাংলাদেশে আসেন ১৯৯৭ সালের ২৫শে মার্চ সকালে। তিনদিনের সেই সংক্ষিপ্ত সফরে তিনি ছিলেন ঢাকায় তখনকার হোটেল শেরাটনে, যা এখন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল নাম নিয়েছে। সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির তখন ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব। মি. ম্যান্ডেলার সঙ্গে তাঁর হোটেল কক্ষে দেখা করতে গিয়েছিলেন মি. জমির। তিনি বলছেন, নেলসন ম্যান্ডেলা জানতেন যে, আমি আসছি। তাঁর কক্ষে প্রবেশের পর তিনি উঠে দাঁড়িয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরেন। এর আগে বিদেশের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তার মুক্তির পক্ষে আমি অনেক কথা বলেছিলাম। সেগুলো স্মরণ করে তিনি আমাকে একজন বন্ধু বলে সম্বোধন করেন। তিনি আমাকে তার একটি ছবি উপহার দেন, যেখানে লেখা ছিল, 'মোহাম্মদ জমির, বেস্ট উইশেস টু আ ডিপেন্ডেবল ফ্রেন্ড।' হোটেল কক্ষে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার অনেক বিষয় নিয়ে মোহাম্মদ জমিরের সঙ্গে নেলসন ম্যান্ডেলার কথা হয়। হোটেল শেরাটনে সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমিরের কাছে বাংলাদেশের আমের খোঁজ নিয়েছিলেন নেলসন ম্যান্ডেলা মি. জমির বলছেন, আলাপে তিনি অনেক গুরুত্ব দিলেন। তার একটি হচ্ছে দারিদ্র বিমোচন। তিনি বললেন, দরিদ্র যারা আছে, তারা শুধু আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে ভুগছে না, তাদের শিক্ষা আর স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে সাহায্য করতে হবে। আরো বললেন, যারা নিপীড়িত, তাদের সহযোগিতা দিতে হবে, যাতে তারা ঘুরে দাড়াতে পারে। রাষ্ট্রদূত হিসাবে কিভাবে ভালোভাবে দায়িত্ব পালন করা যায়, তা নিয়েও মোহাম্মদ জমিরকে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন নেলসন ম্যান্ডেলা। ১৯৭১ সালের পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম নিয়ে কিছু করা হচ্ছে কিনা, সেসব জানতে চেয়েছিলেন মি. ম্যান্ডেলা। ২৬শে মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিখা চিরন্তন ও স্বাধীনতার স্তম্ভের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মি. ম্যান্ডেলা। তার আগে অপর দুই নেতার সঙ্গে সাভারে স্মৃতিস���ধে পুষ্প অপর্ণ করেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেয়া বক্তব্যে তিনি তিনি দক্ষিণ আফ্রিকান মানুষের সংগ্রামের বর্ণনা তুলে ধরে বাংলাদেশ ও তাদের রাজনৈতিক, বাণিজ্য আর সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির কথা তুলে ধরেন। নেলসন ম্যান্ডেলাকে সামনাসামনি দেখতে পাওয়া বড় প্রাপ্তি বলে মনে করেন ফকির আলমগীর হাজার হাজার মানুষের সেই সমাবেশে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ''স্বাধীনতা আর অধিকার আদায়ের সংগ্রামে বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষের অনেক মিল রয়েছে। আজ আমরা যেসব সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি, বাংলাদেশের মানুষকেও একসময় এরকম সমস্যার মোকাবেলা করতে হয়েছে। একটি দূরের দেশ হওয়ার সত্ত্বেও দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষের মুক্তি সংগ্রামে আপনারা যে সমর্থন দিয়েছেন, সেজন্য আপনাদের প্রতি আমি তাদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই।'' নেলসন ম্যান্ডেলাকে নিয়ে গান গেয়েছিলেন বাংলাদেশের গায়ক ফকির আলমগীর। গানটি লিখেছিলেন সেজান মাহমুদ। ফকির আলমগীর বলেন, সেই গানের কথা জানতে পেরে তার সঙ্গে নিজে থেকেই দেখা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন মি. ম্যান্ডেলা। সরকারি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ফোন পেয়ে তার সঙ্গে দেখা করে সেই গান শুনিয়েছিলেন মি.আলমগীর। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে ২৭ বছর কারাবাস করেছেন নেলসন ম্যান্ডেলা ফকির আলমগীর বলছেন, ''তখনকার প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন আমাকে টেলিফোন করে হোটেল শেরাটনে আসতে বলেন। আমার স্ত্রীকেও নিয়ে আসতে বলেছিলেন। কারণ বঙ্গভবনে যাওয়ার আগে (প্রেসিডেন্টের নিমন্ত্রণে) নিজের হোটেল কক্ষে নেলসন ম্যান্ডেলা আমার সঙ্গে দেখা করবে।'' ''তখন দ্রুত ছুটে গেলাম শেরাটনে। অনেকেই দেখা করবে বলে লবিতে অপেক্ষা করছে। কিন্তু আমাকে সরাসরি তার রুমে নিয়ে যাওয়া হল। তিনি তখন বঙ্গভবনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন। তিনি আমাকে নিয়ে নিচে নেমে এলেন। এবং নেমেই তিনি আমাকে বললেন, গানটা গাও। আমি যখন গানটা ধরেছি, তিনি আমার সঙ্গে আফ্রিকান ধরণে নাচতে শুরু করলেন, সেটা এখনো আমার চোখে লেগে আছে।'' এসব গানের কথা আগেই তাকে জানানো হয়েছিল বলে ফকির আলমগীর জানান। এরপর তার গাড়ি বহরের সঙ্গেই বঙ্গভবনে যান ফকির আলমগীর। সেখানে ঢুকে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অতিথি কক্ষে যাওয়ার আগে তার দিকে হাত নেড়ে বিদায় জানান নেলসন ম্যান্ডেলা। যদিও খাবারের ক্ষেত্রে পরিমিত ছিলেন মি. ম্যান্ডেলা। তবে কূটনৈতিক কর্মকর্তা মোহাম্মেদ জমিরের সঙ্গে অনেক আলাপের মধ্যে আমের প্রসঙ্গও তুলেছিলেন। ''আলাপচারিতার মধ্যে আমাকে একটি প্রশ্ন করলেন যে, আমি শুনেছি আপনি আমের কথা বলেছিলেন এক জায়গায়। তো কই, আম কই? আমি বললাম, এখন তো মার্চ মাস, এখন আম হবে না। আপনি যদি মে মাসে কি জুন মাসে আসেন, তাহলে আম খাওয়াতে পারি। তখন উনি খুব হাসলেন। আবার বললেন, তাহলে এ মাসে আর আম পাওয়া যাবে না?'' নেলসন ম্যান্ডেলার মৃত্যুর পর বাংলাদেশে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোকপালন করা হয় ২৭শে মার্চ মি. ম্যান্ডেলা দক্ষিণ আফ্রিকান এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে আবার ফিরে যান। এরপরে আর তার বাংলাদেশে আসা হয়নি। নেলসন ম্যান্ডেলা দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন ১৯৯৪ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে তার মৃত্যুতে বাংলাদেশেও তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হয়েছিল, যাকে সবসময়েই বাংলাদেশের একজন অকৃত্রিম বন্ধু বলে সম্বোধন করা হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ বিরোধী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার শততম জন্মবার্ষিকী পালিত হচ্ছে ১৮ই জুলাই, যে দিনটি নেলসন ম্যান্ডেলা দিবস বলে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘ। +text: বাংলাদেশে ব্যাংকগুলোর মোট ৭ হাজারের মতো এটিএম বুথ রয়েছে। বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ন্যাশনাল পেমেন্ট সিস্টেমের আওতায় এটিএম বুথে আন্তঃ ব্যাংকিং সেবা দিয়ে থাকে, অর্থাৎ এক ব্যাংকের বুথ থেকে অন্য ব্যাংকের গ্রাহকেরা অর্থ লেনদেন করতে পারেন। কিন্তু গত শুক্রবার বেসরকারি ইস্টার্ন ব্যাংকের একুশ জন গ্রাহক সহ আরো কয়েকটি ব্যাংকের গ্রাহকদের এটিএম কার্ডের তথ্য জালিয়াতি করে চোরেরা লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংক সতর্কতা জারি করার পর ব্যাংকগুলো এই ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। বেসরকারি সিটি ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাদের বুথগুলোতে অন্য ব্যাংকের গ্রাহকদের সেবা দান বন্ধ রাখবার খবর বিবিসির কাছে নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরো জানান, অন্য ব্যাংকগুলোও একই ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে তিনি জানতে পেরেছেন। এর ব্যাখ্যা হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, যেহেতু বেশ কিছু ব্যাংকের কার্ড প্রযুক্তি ব্যবহার করে জাল করে ফেলেছে চোরেরা, ফলে তারা মনে করছেন, এখনো কিছু কার্ড রয়ে গেছে চোরেদের হাতে যেগুলো দিয়ে আরো অর্থ হাতিয়ে নিতে পারে তারা। ‘কিন্তু আমরা যেহেতু এক ব্যাংকের বুথে অন্য ব্যাংকের কার্ড ঢোকাতে দিচ্ছি না, ফলে তাদের চুরি করার ক্ষেত্র অনেক ছোট হয়ে যাবে’। বলছিলেন ওই কর্মকর্তা। এই সংকট সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এই ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে বলেও উল্লেখ করেন ওই কর্মকর্তা। বাংলাদেশে মোট ৮৫ লাখ এটিএম কার্ড গ্রাহক রয়েছে। ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহক রয়েছে আরো ৫ লাখ। এ খবরটি নিশ্চিত করার জন্য ব্যাংকগুলোর দুই সংগঠন ‘বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস’ এবং ‘অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের’ নেতাদের সাথে যোগাযোগ করে তাদেরকে পাওয়া যায়নি। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, তারা এটিএম বুথগুলোতে আন্তঃ ব্যাংকিং বন্ধ রাখবার কোনও নির্দেশনা দেয়নি। “গ্রাহকদের স্বার্থই আমাদের কাছে সবার আগে। ব্যাংকগুলো যদি এমনটি করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে আমাদের”। বলছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, দেশটিতে ৮৫ লাখের মতো এটিএম কার্ড ব্যবহারকারী রয়েছেন। এদেরকে সেবা দেবার জন্য সবগুলো ব্যাংক মিলে ৭ হাজারের মতো এটিএম বুথ রয়েছে। এটিএম বুথে আন্তঃ ব্যাংক সেবা বন্ধ রাখা হলে, নিঃসন্দেহে বহু গ্রাহক হয়রানীর শিকার হবে। এদিকে বাংলাদেশ বাংক আরো বলছে, শুক্রবারের জালিয়াতির ঘটনা নিয়ে আজ জরুরী বৈঠক করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এ ব্যাপারে অচিরেই নতুন এক গুচ্ছ নির্দেশনা দেয়া হতে যাচ্ছে ব্যাংকগুলোকে। বাংলাদেশে সম্প্রতি কয়েকটি ব্যাংকের এটিএম কার্ড গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেবার অভিযোগ উঠবার পর আজ দেশটির অধিকাংশ ব্যাংকই তাদের এটিএম বুথগুলো থেকে অন্য ব্যাংকের গ্রাহকদের সেবা দেয়া বন্ধ রেখেছে বলে জানা যাচ্ছে। +text: পদ্মাসেতু। শনিবার সকালে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি প্রকল্পটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক, ঠিকাদার, প্রকৌশলীসহ ৮টি জায়গায় পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান। ওই চিঠিতে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বলা হয়েছে, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবারসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে পদ্মা সেতু সংশ্লিষ্ট কোন ভিডিও, ফটো বা এ সম্পর্কিত বার্তা তারা শেয়ার করতে পারবেন না। এখন থেকে প্রকল্প পরিচালক ও প্রকল্পের জন সংযোগ কর্মকর্তারা ত��্য শেয়ার করবেন। পদ্মা সেতু প্রকল্পে প্রকৌশলী, ঠিকাদারসহ অন্তত চার থেকে পাঁচ হাজার মানুষ কাজ করেন। সামনে জনবলের সংখ্যা সাত থেকে আট হাজার মানুষ হবে। সবাই ঢালাওভাবে তথ্য ও ছবি শেয়ার করলে বিভ্রান্তিকর ভুল তথ্য বা গুজব ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে সেজন্য এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, "এখন হাজার হাজার কর্মকর্তা কর্মচারীদের সবাই তো আর পদ্মা সেতুর অগ্রগতির কথা বা প্রকল্পের তথ্যের কথা জানাতে পারে না। সবাই তো বলতে পারে না যে কয়টি স্প্যান বসানো হয়েছে। সবাই যার যার আইডি থেকে যা ইচ্ছা শেয়ার দেবে তা তো হতে পারে না। এখন থেকে নির্দিষ্ট কয়েকজনই এ বিষয়ে তথ্য দেবেন।" তবে কাজের প্রয়োজনে পদ্মা সেতুর কোন তথ্য বা ছবি শেয়ারের প্রয়োজন হলে সেটা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইমেইলে ও ক্ষুদে-বার্তায় পাঠানো হবে। কোন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করা হবে না বলে তিনি জানান। প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে বলেন, "বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল এবং নামী বেনামী গণমাধ্যমে পদ্মা সেতুর নানা ছবি সংগ্রহ করে ভুল তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রচার করে আসছে- সেজন্য এ ধরণের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।" পদ্মা সেতু বাংলাদেশ সরকারের রাজনৈতিক অগ্রাধিকার পাওয়া প্রকল্পগুলোর একটি আরও পড়তে পারেন: পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হতে আরও চার বছর বিলম্ব? পদ্মা সেতু তৈরিতে মানুষের মাথা লাগার গুজব কেন? বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে 'সাইবার যুদ্ধের' সম্ভাবনা সম্প্রতি পদ্মা সেতুর কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের অনেক জিনিষপত্র ভাঙনের কারণে তলিয়ে যায়, এমন কিছু ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। মূলত সেই সময় থেকেই প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মৌখিকভাবে নানা নির্দেশনা দিয়ে আসছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবার লিখিতভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে বলে ওই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন। তবে গণমাধ্যমের তথ্য ও ছবি সংগ্রহের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা নেই- এটি নিশ্চিত করে শফিকুল ইসলাম জানান, "গণমাধ্যম কর্মীরা যথাযথ অনুমোদন নিয়ে ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করে এবং তার সঙ্গে কিংবা জনসংযোগ কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার নিয়ে সংবাদ প্রচার করতে পারবেন।" পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ বা নির্মাণ এলাকার কোন ছবি/ভিডিও বা অন্যান্য তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ না করতে নির্দেশনা দিয়েছেন পদ্মা সেতু প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম। +text: সাকিব আল হাসানের বেতন বিশ্বের সর্বোচ্চ বেতন পাওয়া ক্রিকেটারের ১২ ভাগের ১ ভাগ ক্রিকেটারদের মধ্যে কোন দেশের আয় সবচেয়ে বেশি? চুক্তি বাতিলের আগে ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ বাৎসরিক বেতন ছিল স্টিভ স্মিথের। প্রতি বছর তার আয় ছিল ১৪ লাখ ৭০ হাজার ডলার। ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়ক জো রুটের বেতন বছরে ১৩ লাখ ৮০ হাজার ডলার। ভারতের অধিনায়ক ভিরাট কোহলি আয় করেন ১০ লাখ ডলার প্রতি বছর। ক্রিকেটের অর্থনৈতিক কাঠামো বদলে দিয়েছে আইপিএলের জৌলুস তবে এই তিন দেশ ছাড়া বাকি দেশগুলোর সর্বোচ্চ আয় করা ক্রিকেটারের বেতন অর্ধেকেরও কম। যেমন দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্যাফ ডু প্লেসি আয় করেন প্রতি বছর ৪ লাখ ৪০ হাজার ডলার। শ্রীলংকার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ বছরে ৩ লাখ ২০ হাজার ডলার আয় করেন। পাকিস্তানের ক্রিকেটার সরফরাজ খানের আয় সেখানে ৩ লাখ ডলার। আর বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান আয় করেন ১ লাখ ৪০ হাজার ডলার। যা বাংলাদেশের মুদ্রায় ১ কোটি ১৬ লাখ ১৪ হাজারের একটু বেশি। সেখানে ভারতের 'সি' ক্যাটাগরির ক্রিকেটারদের বেতন ১ কোটি ২৫ হাজার টাকা প্রায়। আরও পড়ুন: স্থায়ী চুক্তিতে 'মাত্র' ১০ ক্রিকেটার রাখা নিয়ে বিতর্ক চুক্তি বাতিল হওয়ার আগে স্টিভ স্মিথের বেতন ছিল বিশ্ব ক্রিকেটে সর্বোচ্চ বিভিন্ন দেশে সর্বোচ্চ আয় করা ক্রিকেটারের বার্ষিক বেতন •স্টিভ স্মিথ (চুক্তি বাতিল)- ১২ কোটি ১৯ লাখ ৯২ হাজার টাকা •জো রুট- ১১ কোটি ৪৫ লাখ ২৩ হাজার টাকা •ভিরাট কোহলি- ৮ কোটি ৭৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকা •ফ্যাফ ডু প্লেসি- ৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা •অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ- ২ কোটি ৬৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা •সরফরাজ আহমেদ- ২ কোটি ৪৮ লাখ ৯২ হাজার টাকা •জেসন হোল্ডার- ২ কোটি ২৪ লাখ টাকা •কেন উইলিয়ামসন- ২ কোটি ৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকা •সাকিব আল হাসান- ১ কোটি ১৬ লাখ ১৪ হাজার টাকা একমাত্র জিম্বাবুয়ের সর্বোচ্চ আয় করা গ্রায়েম ক্রেমার সাকিবের চেয়ে কম বেতন পান। বছরে তার বেতন ৭৪ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। এছাড়া ম্যাচ ফি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধার তারতম্যের কারণেও আয় বাড়ে কমে। ভারতের অধিনায়ক ভিরাট কোহলি আয় করেন ১০ লাখ ডলার প্রতি বছর বর্তমান যুগে ক্রিকেটাররা অন্য খেলার তুলনায় কেমন আয় করে? বিশ্বব্যা��ী অন্যান্য খেলার চেয়ে ক্রিকেটারদের আয় বেশ কম। আমেরিকার ফোর্বস ম্যাগাজিনের ২০১৭ সালের জুলাই মাসের সমীক্ষা অনুযায়ী, বিজ্ঞাপন বা অন্য খাত বাদে, শুধু খেলা থেকে পর্তুগিজ ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালডো প্রতি বছর আয় করেন ৫৮ মিলিয়ন ডলার। ফরমুলা ওয়ানের ব্রিটিশ রেসার লু্‌ইস হ্যামিলটনের আয় ৩৮ মিলিয়ন ডলার, যুক্তরাষ্ট্রের লেব্রন জেমসের আয় ৩৬ মিলিয়ন ডলার। শুধু ফুটবলে খেলেই রোনালদোর আয় বছরে ৫৮ মিলিয়ন ডলার অন্যদিকে এই বছর বল ট্যাম্পারিংয়ের ঘটনায় চুক্তি বাতিল হওয়া সাবেক অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট অধিনায়ক স্টিভ স্মিথের আয় ছিল প্রতি বছর মাত্র ১.৪৭ মিলিয়ন ডলার। এছাড়া গলফ বা টেনিসের সর্বোচ্চ আয়ের ক্রীড়াবিদ একজন ক্রিকেটারের চেয়ে বেশি আয় করে। বিশ্বের কোন খেলার তারকারা বছরে শুধু খেলা থেকে কেমন আয় করেন- বর্তমান যুগে ক্রিকেটারদের বেতন-ভাতা অন্যতম আলোচনার বিষয়। গত বছর অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় ক্রিকেট দলের সাথে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার বেতন-ভাতা নিয়ে দ্বন্দ্ব এই আলোচনায় নতুন মোড় নিয়ে আসে। +text: পুলিশি হেফাজতে নিহত রায়হান রায়হান নামে ওই যুবকের মৃত্যুর ঘটনা সম্প্রতি বাংলাদেশে বিরাট আলোচনার সূত্রপাত ঘটায়। এনিয়ে সিলেটে বিক্ষোভ ও আন্দোলনও হয়েছে। এক পর্যায়ে এইসআই আকবরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে আলটিমেটাম দেয়া রায়হানের পরিবার, আলটিমেটাম শেষ হবার পর তারা অনশনও পালন করে। অবশেষে আটাশ দিন পর মি. হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হলো। পুলিশ বলছে, মি. হোসেন এতদিন পলাতক ছিলেন। তিনি ভারতে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। এরই এক পর্যায়ে সীমান্তে অঞ্চল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সিলেটের পুলিশের এসপি নুরুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে জানান, সোমবার বেলা ১২টার দিকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি বলেন, আগে থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভারতের সাথে সীমান্তবর্তী কানাইঘাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মি. ইসলাম বলেন, "সম্ভবত ওই এলাকায় হাইবারনেশনে ছিল আকবর হোসেন।" এদিকে বিকেলে সিলেটে পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে এ সম্পর্কি এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভারত থেকে নয় বরং বাংলাদেশি সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে এসআই আকবর হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই গ্রেফতারের সাথে সিলেট জেলা পুলিশ প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। আকবর হোসেন ভারতে পালিয়ে গিয়েছিল কিনা এমন প্রশ���নের উত্তরে সিলেটের পুলিশ সুপার মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, এবিষয়ে এখনো সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ নাই। তিনি বলেন, "আদৌ পালিয়ে গিয়েছিল কিনা, এমনটা হতে পারে সে একবার পালিয়ে গিয়েছে আবার নিজে থেকে এলাকায় ঢুকতে চেয়েছে, আবার এমনও হতে পারে যে বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়া যাওয়ার পথে ধরা পড়েছে। দুই টাই হতে পারে।" মি. উদ্দিন বলেন, কোনটি ঘটেছে সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। পুলিশ এবং পিবিআই তাকে যৌথভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করবে বলে জানানো হয়। তবে পুলিশের কাছে যে তথ্য ছিল সেটি হচ্ছে, আকবর হোসেন বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। গ্রেফতারের বিষয়ে পুলিশ কারো সহায়তা নিয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে পুলিশ জানায়, "এখানে আমাদের নির্ভরযোগ্য বন্ধু ছিল যারা আমাদেরকে গ্রেফতারের কাজে সহযোগিতা করেছে।" আকবর হোসেনকে কোন পুলিশ কর্মকর্তা সহায়তা করে থাকলে তদন্তের মাধ্যমে তা খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানানো হয়। রায়হান হত্যার অভিযোগ ওঠার শুরুর দিকেই পুলিশের তদন্ত কমিটির সুপারিশে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি থেকে আকবরসহ ৭ জনকে বরখাস্ত ও প্রত্যাহার করা হয়। কী ঘটেছিল রায়হানের সাথে? গত ১০ই অক্টোবর সিলেটের কাষ্টঘর এলাকা থেকে রায়হান আহমেদকে আটক করে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়। এরপর ভোররাতের দিকে অপরিচিত নম্বর থেকে রায়হান তার মামাতো ভাইকে ফোন করে টাকা নিয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে আসতে বলেন। সকালে রায়হানের বাবা ফাঁড়িতে গেলে সেখান থেকে তাঁকে হাসপাতালে যেতে বলা হয়। হাসপাতালে গিয়ে রায়হানের মৃত্যুর খবর জানতে পারেন তিনি। আরো পড়ুন: ওই রাতেই নিহতের স্ত্রী পুলিশকে অভিযুক্ত করে সিলেটের কোতোয়ালি থানায় হেফাজতে মৃত্যু আইনে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর থেকে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন শুরু করে সাধারণ মানুষ। ১৫ দিনের মধ্যেও আইনের মানুষেরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কেন গ্রেফতার করতে পারছে না। এবং প্রধান অভিযুক্ত আকবর হোসেন জবানবন্দি দেয়ার একদিন পর কীভাবে পালিয়ে গেল সেটা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে আসছে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। ঐ ঘটনার পর একদফা ময়নাতদন্ত শেষে রায়হানকে কবর দিয়ে দেয়া হলেও পরে কবর থেকে তুলে লাশ দ্বিতীয় দ��ায় ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তে তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যাওয়ার কথা জানায় মামলার তদন্তকারী সংস্থা। যদিও, রায়হান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ শুরুতে দাবি করেছিল যে ছিনতাইয়ের অভিযোগে এলাকাবাসী তাকে গণপিটুনি দিয়ে আহত করেছে। পরে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। কিন্তু সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে কোন গণপিটুনির আলামত পাওয়া না যাওয়ায় ঘটনার মোড় ঘুরে যায়। সিলেটে পুলিশি হেফাজতে থাকাকালে নির্যাতনের কারণে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত পুলিশের বরখাস্ত হওয়া সাব ইনসপেক্টর আকবর হোসেন আজ গ্রেপ্তার হয়েছে। +text: বিজয়ী নরেন্দ্র মোদি পরাজিত রাহুল গান্ধী বিজয়ী স্মৃতি ইরানি বিজয়ী সোনিয়া গান্ধী পরাজিত কানহাইয়া কুমার বিজয়ী শশী থারুর বিজয়ী অমিত শাহ বিজয়ী রাজনাথ সিং পরাজিত রাজ বাব্বার বিজয়ী সাক্ষী মহারাজ পরাজিত উর্মিলা মাতোন্ডকার বিজয়ী হেমা মালিনী বিজয়ী এম কে কানিমোজহি বিজয়ী বরুণ গান্ধী বিজয়ী মানেকা গান্ধী বিজয়ী অখিলেশ যাদব বিজয়ী ভাগয়ান্ত মান বিজয়ী নিতিন গাডকারী বিজয়ী রবিশঙ্কর প্রসাদ বিজয়ী শত্রুঘ্ন সিনহা বিজয়ী মুলায়াম সিংহ যাদব পরাজিত মেহবুবা মুফতি বিজয়ী আসাদুদ্দিন ওয়াইসি বিজয়ী গৌতম গম্ভীর বিজয়ী সাধ্বী প্রজ্ঞা বিজয়ী জয়া প্রদা পরাজিত কিরেন রিজিজু পরাজিত ভূপিন্দার সিং হুদা বিজয়ী হার্সিম্রাট কৌর বাদল বিজয়ী সুখবির সিং বাদল বিজয়ী সানি দেওল ২৩শে মে ভোট গণনার পর জানা যাবে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে পারবে, নাকি বিরোধীদল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (আইএনসি) তাদের ২০১৪ সালের ফলাফলে কোন উন্নতি ঘটাতে পারবে। অল্প কয়েকটি রাজ্যে, মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা বিজেপি বা কংগ্রেসের মধ্যে হবে না। হবে আঞ্চলিক দলগুলোর মধ্যে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে তামিলনাড়ুতে ডিএমকে এবং এআইডিএমকে, অন্ধ্র প্রদেশে টিডিপি ও ওয়াইএসআর, তেলেঙ্গানায় টিআরএস, এবং উত্তর প্রদেশে সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টি'র নেতৃত্বাধীন দুটি আঞ্চলিক জোট। গত ১১ই এপ্রিল থেকে ১৯শে মে পর্যন্ত ভারতের জনগণ সে দেশের সংসদের নিম্ন-কক্ষ লোকসভার ৫৪২টি আসনে ভোটদান করেন। ৯০ কোটি ভোটার সাত দফায় তাদের রায় প্রদান করেন। +text: পূর্ব ইউক্রেইনে মালয়েশীয় বিমানের ধ্বংসাবশেষ। চার ��ছর আগে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট এমএইচ-১৭কে ইউক্রেইনের আকাশসীমায় ভূপাতিত করা হয়। এতে অ্যামস্টারডাম থেকে কুয়ালালামপুরগামী বিমানের ২৯৮ জন যাত্রীর সবাই প্রাণ হারান। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তদন্তকারীরা জানান, রুশ সেনাবাহিনীর ৫৩তম বিমান বিধ্বংসী মিসাইল ব্রিগেড থেকে ঐ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছিল। ঐ ক্ষেপণাস্ত্রবাহী কনভয়ের মাধ্যমে কিভাবে মিসাইলগুলি পূর্ব ইউক্রেইনের রুশ সমর্থিত বিদ্রোহীদের হাতে পৌঁছে দেয়া হয়েছিল, সে সম্পর্কে তদন্তকারীরা কিছু ছবিও প্রকাশ করেন। ইউক্রেন এবং পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা এর আগে থেকেই অভিযোগ করে আসছিলেন যে পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিদ্রোহীরাই বিমানটিকে ভূপাতিত করেছে। তবে রাশিয়া এবং বিদ্রোহীদলগুলো বরাবরই ঐ ঘটনায় তাদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে আসছে। ঘটনাস্থলে তদন্ত চালিয়ে ডাচ বিশেষজ্ঞরাও বলেছিলেন যে তারা ঘটনাস্থলে এমন কিছু টুকরো পেয়েছেন যা সম্ভবত রাশিয়ায় তৈরি Buk জাতীয় ভূমি-থেকে-আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের টুকরো। পূর্ব ইউক্রেইনে নিহতদের স্মরণে পদযাত্রা। আরো পড়তে পারেন: “বন্দুকযুদ্ধ নিয়ে স্বাধীন তদন্তের সুযোগ নেই” শরণার্থীদের ফেলে যাওয়া লাইফভেস্ট কোথায় যাচ্ছে? ফেসবুক কেন ব্যবহারকারীদের নগ্ন ছবি চাইছে? মালয়েশিয়ার বিমান ধ্বংসের জন্য যে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক তদন্তকারীরা বলছেন রাশিয়ার সেনাবাহিনীর একটি ইউনিট এটি সরবরাহ করেছিল। +text: আরাফাত সানি বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয় ১৬টি এক দিনের আন্তর্জাতিক এবং ১০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। (ফাইল ছবি) এছাড়া তাঁকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদনও খারিজ করে দিয়েছে আদালত। আজ রোববার ঢাকার মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনসারী দুটি আবেদন নাকচ করে দেন। বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তি আইনের একটি মামলায় গত ২২শে জানুয়ারি ক্রিকেটার আরাফাত সানিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মি. সানির স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেয়া এক তরুণীর করা তথ্যপ্রযুক্তি আইনে করা মামলায় এর আগেও জামিন আবেদন নাকচ করে দেন আদালত। ওই তরুণী আরাফাত সানির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেছেন, ফেসবুক মেসেঞ্জারে তাদের কিছু অন্তরঙ্গ ছবি পাঠিয়ে তাকে হুমকি দিয়েছেন এই ক্রিকেটার। তবে মি. সানি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তথ্যপ্রযুক্তি আইনে করা মামলায় আগামী ১৫ই ফেব্রুয়ারি আরাফাত সানির জামিন শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। অন্যদিকে নারী নির্যাতনের মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২রা মার্চ দিন ধার্য করা হয়েছে। গত ১লা ফেব্রুয়ারি ঢাকার ৪ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে যৌতুকের জন্য মারধরের অভিযোগে ক্রিকেটার আরাফাত সানি ও মা নার্গিস আক্তারের বিরুদ্ধে তৃতীয় মামলা করেন মি: সানির স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেয়া ওই তরুণী। ওই দিনই বিচারক মামলাটিকে এজাহার হিসেবে নেওয়ার জন্য মোহাম্মদপুর থানাকে নির্দেশ দেন। আরও পড়তে পারেন: মুশফিকের সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩৮৮ রান পদ্মা সেতু ইস্যু: সরকারের নৈতিক বিজয়? সৌদি আরবে তরুণদের জন্য খুলছে বিনোদনের পথ নারী নির্যাতনের মামলায় বাংলাদেশের জাতীয় দলের ক্রিকেটার আরাফাত সানির জামিন আবেদন নাকচ করে দিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। +text: জ্বলন্ত মোমবাতির ওপর হাত ধরে রাখতে বাধ্য করা হয় ছাত্রদের। যে স্কুলে এই ঘটনা, সেটি ঝাড়খন্ডের পশ্চিম সিংভুম জেলার চক্রধরপুরে। এ ঘটনার পর সেখানে অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাটি তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। স্কুল প্রিন্সিপ্যালের বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল ইতোমধ্যে ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন। তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে যা ঘটেছিল: বেরিটা মেমোরিয়াল স্কুল, যেখানে এই ঘটনা ঘটেছে, সেটি নির্মাণ করা হয়েছে একটি চার্চের সীমানার ভেতরেই। স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর এক ছাত্রের দুশো রুপি চুরি যাওয়ার পর সে এ নিয়ে প্রিন্সিপ্যালের কাছে অভিযোগ করে। আরও পড়ুন: একুশের বইমেলায় 'সেল্ফ সেন্সরশীপের' খড়গ বাংলাদেশি তকমা’র ভয়ে তটস্থ পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমরা খাবার নিয়ে সাবধান হচ্ছেন বাংলাদেশের নারীরা এরপর প্রিন্সিপ্যাল ক্লাসের সব ছাত্রকে ডেকে জানতে চান, কে এই অর্থ চুরি করেছে। কিন্তু কেউই দোষ স্বীকার করেনি। রোশান এখন স্কুলে যেতে চাইছে না এরপর স্কুল প্রিন্সিপ্যাল একে একে সব ছাত্রকে ডেকে জ্বলন্ত মোমবাতির উপর তার হাত ধরে রাখতে বলেন। স্কুল প্রিন্সিপ্যাল নাকি ছাত্রদের বলেছিলেন, যে টাকা চুরি করেছে, তার হাতই শুধু পুড়বে।বাকীদের কোন ক্ষতি ���বে না। এরপর শিশুরা একে একে মোমবাতির ওপর তাদের হাত মেলে ধরতে থাকে। একজন শিশুর হাতে এতটাই মারাত্মকভাবে পুড়ে যায় যে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। রোশন নামের এই শিশুর মা শর্মিলা দেবি বলেছেন, তার ছেলের অবস্থা এখনো স্কুলে যাওয়ার মতো নয়। সে রীতিমত আতংকিত। সে কিছু খেতে পারছে না তার হাত দিয়ে, সে স্কুলে যেতে চাইছে না। জেলা প্রশাসক আরওয়া রাজকমল সিং শর্মিলা দেবি জানান, শুধু তার ছেলে নয়, আরও অনেক ছেলের হাত একইভাবে পুড়ে গেছে। ঘটনাটি নিয়ে পুরো এলাকায় তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা এসডিও প্রদীপ প্রসাদের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে গিয়ে সবার সঙ্গে কথা বলেছেন। এসডিও ইতোমধ্যে এ নিয়ে জেলা প্রশাসক আরওয়া রাজকমল সিং এর কাছে একটি রিপোর্টও জমা দিয়েছেন। তিনি বিবিসিকে জানিয়েছেন, স্কুল প্রিন্সিপ্যাল তদন্ত কমিটির সামনে এসে তার দোষ স্বীকার করেছেন। ভারতের শিশু সুরক্ষা আইনে স্কুল প্রিন্সিপ্যালের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে। প্রিন্সিপ্যাল সুশান্তি হেমব্রম বিবিসি হিন্দিকে জানিয়েছেন, বাচ্চাদের হাত যে এভাবে পুড়ে যাবে তিনি তা বুঝতে পারেন নি। তিনি বলেন, সম্প্রতি স্কুলে অনেক চুরির ঘটনা ঘটছিল। সেজন্যে আমি বাচ্চাদের মোমবাতির ওপর হাত ধরতে বলেছিলাম, যাতে যে চুরি করেছে সে ভয় পায়। এদিকে স্কুলটি পরিচালনা করে যে চার্চ, সেই চার্চের প্রধানও এই ঘটনার নিন্দা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এ ঘটনার ব্যাপারে চার্চ তাদের নিজস্ব ব্যবস্থা নেবে। ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যে এক স্কুল প্রিন্সিপ্যাল জ্বলন্ত মোমবাতির ওপর শিশুদের হাত ধরে রাখতে বাধ্য করে তাদের হাত পুড়িয়ে দিয়েছেন। স্কুলে কিছু টাকা চুরি যাওয়ার পর কে টাকা চুরি করেছে তা নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল। +text: আড়াই বছর পর শুক্রবার ঢাকায় সমাবেশ করলো বিএনপি যদিও বিশ্লেষকদের মধ্যে এ নিয়ে পরস্পর বিরোধী মতামত যাওয়া গেছে। তবে বিএনপি বলছে, জনমত ও আন্তর্জাতিক চাপেই সরকার তাদেরকে এ সুযোগ দিয়েছে। বিএনপি ঢাকায় সর্বশেষ সমাবেশ করেছিলো ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে। এরপর নানা ইস্যুতে বেশ কয়েকবার সমাবেশের অনুমতি চাইলেও পুলিশের পক্ষ থেকে অনুমতি মেলেনি। সর্বশেষ গত ৮ই ফেব্রুয়ারি দলটির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া আদালতে সাজা পেয়ে কারাগারে যাওয়ার পর অনেকবার আবেদন করেও সমাবেশের অনুমতি পায়নি বিএনপি। দলীয় নেতারাও শুক্রবারের নয়া পল্টনের সমাবেশের অনুমতি নিয়ে সংশয়ে ছিলেন। তবে অবশেষে অনুমতি পেয়ে সমাবেশ করতে পারায় কথাবার্তা হচ্ছে যে এটা কি তাহলে বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্যে আরো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ দেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে? ওই সমাবেশের একদিন পরেই ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গণসম্বর্ধনা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে বিতর্ক যাই হোক, বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়াকে ইতিবাচক লক্ষণ হিসেবে উল্লেখ করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, " একটা ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে আওয়ামী লীগও প্রস্তুত হচ্ছে যে বিএনপিকে কিছুটা জায়গা দিতে হবে। কারণ আন্তর্জাতিক মহলের পাশাপাশি দেশের ভেতরেও উদ্বেগ আছে নির্বাচন যেনো স্বচ্ছ হয়। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বও জানেন অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলে দেশের ভাবমূর্তিতে চিড় ধরবে। আমার ধারণা সামনে বিএনপি আরও একটু বেশি জায়গা পাবে।" আওয়ামী লীগ শনিবার ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গণসম্বর্ধনা প্রদান করে আরো পড়তে পারেন: ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর ৫টি মন্ত্র পাকিস্তানের এবারের নির্বাচন সর্ম্পকে যা জানা জরুরী মিশরের প্রাচীন শবাধারের ভেতরে কঙ্কাল রহস্য বাংলাদেশে অবৈধ দেশি অস্ত্রের ক্রেতা কারা? মিরপুরের বাড়িতে গুপ্তধন রহস্য: পুলিশের খোঁড়াখুঁড়ি কিন্তু এই অভিমতের সাথে পুরোপুরি একমত নন আরেকজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, "এটা শুভ সূচনা হলে স্বাগত জানাই। কিন্তু আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে যে এ সুযোগ আরও বড় হবে কি-না। তবে এটা স্বাভাবিক যে নির্বাচনের আগে আরেকটু গণতান্ত্রিক সুযোগ বিরোধী দলকে দিতে হবে।" তবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলছেন, এর সাথে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই কারণ সভা সমাবেশের সুযোগ পেয়েও ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। তিনি বলেন, নির্বাচনে যাক আর না যাক সহিংসতা না করলে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সরকার কোন বাধা দেবে না। "বিভিন্ন সময় দেখা গেছে সমাবেশের নামে বিএনপি সহিংসতা চালায়। সেজন্যই অনেক সময় শর্তারোপ করা হয়। তারা যদি সহিংসতা না করে তাহলে অবশ্যই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের আর��� সুযোগ দেবে," বলেন তিনি। অবশ্য সহিংসতার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বিবিসি বাংলাকে বলছেন, সরকার দীর্ঘদিন পর একটি সমাবেশের অনুমতি দিলেও এর বিশেষ কোনো রাজনৈতিক গুরুত্ব তাদের কাছে নেই। তিনি বলেন, "এটা একটা জনসভা। দীর্ঘদিন দেয়া হচ্ছে না। আমরাও বারবার অনুমতি চাইছি। এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এটা কোন রাজনৈতিক সূত্রে গাঁথা নয়।" তবে দল দুটির নেতারা যাই বলুন বিশ্লেষক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ও রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ দু'জনই বলছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে শুক্রবারের বিএনপির সমাবেশের সুযোগের মধ্যে যদি সত্যিকার অর্থেই সরকারের কোন বার্তা থাকে তাহলে সেটি নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশে দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর ঢাকায় বিএনপিকে সমাবেশ করতে দেয়ার পর- এটি বিএনপিকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে আরও সুযোগ দেয়ার সূচনা কি-না তা নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। +text: (এমএসএফ'এর এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে আগস্ট ২৫ থেকে সেপ্টেম্বর ২৪ পর্যন্ত অন্তত ৬ হাজার ৭'শ রোহিঙ্গা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহিংসতার শিকার হয়ে মারা গেছে। এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, রাখাইনে সহিংসতার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা করা যায় কি না তা বিশ্লেষণ করেছেন বিবিসি'র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া প্রতিনিধি জোনাথন হেড) এমএসএফ'এর হিসাবে আগস্ট ২৫ থেকে সেপ্টেম্বর ২৪ পর্যন্ত ৭৩০ জন শিশুকে হত্যা করা হয়েছে তবে অধিকাংশ প্রতিবেদনই সবচেয়ে নিষ্ঠুর ঘটনাগুলোকে গুরুত্ব দিয়েছে। তোলা তুলি নামের একটি গ্রামের সহিংসতার কাহিনী উঠে এসেছে গণমাধ্যমে। আমি কয়েকজন রোহিঙ্গার সাথে কথা বলেছি যারা সহিংসতার ভয়ে পালিয়ে এসেছে, কিন্তু নিজেরা সহিংসতার শিকার হয়নি। এমএসএফ'এর প্রতিবেদনের তথ্য পর্যালোচনা করে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংসতা সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা পাওয়া যায়। প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে মামলা করার সম্ভাব্য সুযোগও থাকে। তবে বাধা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের "রোম সনদ", যা সংস্থাটির গঠনকালীন সময়ের মূল দলিল, সেটিতে মিয়ানমার কখনোই স্বাক্ষর করেনি। কাজেই আদালতের সহযোগিতা করতে তারা বাধ্য নয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা নিতে হলে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের প্রত্যেকের অনুমতি প্রয়োজন। এখন পর্যন্ত চীন মিয়ানমার সরকার যেভাবে এই সঙ্কট মোকাবেলা করেছে, তাতে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে এসেছে। স্বশস্ত্র রোহিঙ্গা গোষ্ঠি আরসা ৩০ টির বেশী পুলিশ পোস্টে আক্রমণ করার পর ২৫শে অগাস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযান শুরু হয়। অভ্যন্তরীন তদন্ত শেষে নভম্বেরে মিয়ানমার সেনাবাহিনী নিজেদের নির্দোষ দাবী করে। সাধারণ মানুষ হত্যা, গ্রাম জালিয়ে দেয়া, ধর্ষণ ও লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করে তারা। মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা মূলত সংখ্যালঘু মুসলিম। তাদের বাংলাদেশ থেকে আসা অভিবাসী মনে করা হয় ও তারা মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পায় না। বিবিসি প্রতিনিধিদের পাওয়া তথ্যের সাথে মিয়ানমার সরকারের বিবৃতির পার্থক্য রয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান এটিকে "জাতিগত নিধনের উদাহরণ" হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এমএসএফ'এর মেডিকেল ডিরেক্টর সিডনি ওয়ং বলেছেন, সহিংসতায় পরিবারের সদস্য হারানো মানুষের সংখ্যা আর সহিংসতার ধরনের বিচারে তাদের জরিপে উঠে আসা তথ্য রীতিমতো বিস্ময়কর। এমএসএফ'এর প্রতিবেদন •সহিংসতায় নিহতের ৬৯% এর মৃত্যু হয়েছে বন্দুকের গুলিতে •৯% মারা গেছে নিজেদের ঘরে অগ্নিদগ্দ্ধ হয়ে •পিটিয়ে মারা হয়েছে ৫% মানুষকে সহিংসতার শিকার হয়েছে অসংখ্য শরণার্থী এমএসএফ'এর মতে মারা যাওয়া পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে ৫৯% গুলিবিদ্ধ হয়ে, ১৫% অগ্নিদগ্দ্ধ হয়ে, ৭% প্রহারের শিকার হয়ে আর ২% ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে মারা গেছে । মি. ওয়ং বলেন "প্রতিবেদনে উঠে আসা সংখ্যার চেয়ে প্রকৃত সংখ্যা বেশী হওয়া স্বাভাবিক। বাংলাদেশে থাকা সব শরনার্থীদের সাথে আমরা কথা বলতে পারিনি আর যেসব পরিবার মিয়ানমার থেকে বের হতে পারেনি তাদের তথ্যও নেই প্রতিবেদনে।" লক্ষাধিক শরনার্থী ফিরিয়ে নিতে নভেম্বরে মিয়ানমার বাংলাদেশের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এমএসএফ'এর হিসেবে এই চুক্তি 'সময়ের আগেই' করা হয়েছে। তারা বলছে এখনো রাখাইন থেকে পালিয়ে আসছে শরনার্থীরা আর এখনো সেখানে সহিংসতা অব্যাহত থাকার খবর পাওয়া যাচ্ছে। রাখাইনে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনাকারীদের চলাফেরায় সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে এমএসএফ। রোহিঙ্গারা রাষ্ট্রহীন মুসলিম সংখ্যালঘু গোষ্ঠী যারা মিয়ানমারে লম্বা সময় য��বত সহিংসতার শিকার হয়ে আসছে। সাংবাদিক ও গবেষকদের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ ও শরণার্থীদের সাক্ষাৎকার পর্যালোচনা করলে কোনো সন্দেহের অবকাশ থাকে না যে মিয়ানমারের নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। +text: গত মাসেই তুরস্কের সেনাবাহিনী এবং তাদের সমর্থিত বিদ্রোহীদের সাথে কুর্দি মিলিশিয়াদের যুদ্ধ হয়েছে মোবাইল ফোনে তোলা কিছু ভিডিও প্রকাশ পাবার পর এ অভিযোগ উঠেছে - যাতে সৈন্যদের বর্বরতার ছবি ধরা পড়েছে। জাতিসংঘ তুরস্ককে সতর্ক করে দিয়েছে - তার মিত্রদের কর্মকান্ডের জন্য তুরস্ককেই দায়ী করা হতে পারে। তুরস্ক অবশ্য অঙ্গীকার করেছে যে তারা ব্যাপারটি তদন্ত করবে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, দাড়িওয়ালা লোকেরা আল্লাহু আকবর বলে শ্লোগান দিচ্ছে। কুর্দি যোদ্ধাদের কিছু মৃতদেহ মাটিতে পড়ে রয়েছে, আর একজন লোক তার স্মার্টফোন দিয়ে ভিডিও করতে করতে বলছে, 'আমরা হচ্ছি ফায়লাক-আল-মাজদ্ ব্যাটালিয়নের মুজাহিদ।' একটু দূরে এক নারীর রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে আছে, এবং একদল লোক পা দিয়ে দেহটি মাড়াচ্ছে। একজন বলছে, 'ও একটা বেশ্যা।' বীভৎস এসব ভিডিও ফুটেজের সাথে ইসলামিক স্টেট নামের উগ্র গোষ্ঠীর ভিডিওর অনেক মিল আছে। কিন্তু এই ভিডিওটির লোকেরা আইএস জঙ্গী নয়, বরং সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি নামে একটি বিদ্রোহী জোটের যোদ্ধা। এদের প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ও বেতন দেয় তুরস্ক - একটি নেটো জোটভুক্ত দেশ। এই বিদ্রোহী জোটটির কার্যক্রমও চলে তুরস্কের সেনাবাহিনীর কমান্ডের অধীনে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এসব ভিডিওতে যে কর্মকান্ড দেখা যাচ্ছে তা যুদ্ধাপরাধ বলে বিবেচিত হতে পারে। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: গণহারে শ্রমিক ফিরে আসার নেপথ্যে কি সৌদি 'ফ্রি ভিসা' বেঁটে পুরুষদের কী যৌনসঙ্গী পেতে সমস্যা হয়? ভারতের সাথে চুক্তি: প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেবে বিএনপি অধ্যক্ষকে পানিতে নিক্ষেপ: যা ঘটেছিল সেদিন পেঁয়াজের দাম শিগগিরই কমছে না উত্তর সিরিয়ায় কোন এলাকা কার নিয়ন্ত্রণে: অক্টোবর ২০১৯ গত ২১শে অক্টোবর উত্তর সিরিয়ায় এই ভিডিওটি তোলা হয়। যে মহিলাটির মৃতদেহ পায়ে মাড়ানো হচ্ছে, তার নাম আমারা রেনাস। কুর্দি যোদ্ধা বাহিনী ওয়াইপিজে'র নারী বাহিনীর একজন সদস্য। সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট বাহিনীকে পরাজিত করার ক্ষেত্রে এই বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার রেখেছে। সম্প্রতি সিরিয়ায় কুর্দি বাহ���নীর বিরুদ্ধে তুর্কি বাহিনীর অভিযানের সময় আমারা রেনাস নিহত হন। গত ৯ই অক্টোবর তুরস্কের সেনাবাহিনী এবং তুরস্ক সমর্থিত সিরিয়ান বিদ্রোহীদের অভিযান শুরুর পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বহু ভিডিও বেরুতে থাকে। বলা হয় এসব ভিডিও, তুরস্ক-সমর্থিত বিদ্রোহীদের তোলা। এরকম একটি ভিডিওতে একজন অজ্ঞাতনামা যোদ্ধাকে আরবি ভাষায় চিৎকার করে বলতে শোনা যায়: "অবিশ্বাসী আর ধর্মদ্রোহী - আমরা তোদের মাথা কাটতে এসেছি।" আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, কালো পোশাক পরা এবং মুখোশধারী এক বিদ্রোহী একজন আতংকিত মহিলাকে নিয়ে যাচ্ছে। তাকে ঘিরে আছে অন্য বিদ্রোহীরা। তাদের একজন ভিডিও করছে। আরেকজন চিৎকার করছে, 'শূয়োর'! আরেকজন বলছে, "ওকে শিরশ্ছেদ করার জন্য নিয়ে যাও।" আমারা রেনাস, তার মৃতদেহ পা দিয়ে মাড়াতে দেখা গেছে ভিডিওতে ধরা পড়া এই মহিলাটির নাম সিসেক কোবানে - একজন ওয়াইপিজে যোদ্ধা। এ ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায় এবং তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়। এটি প্রকাশিত হবার কয়েকদিন পর তুরস্কের রাষ্ট্রীয় টিভিতে দেখানো হয়, দুরস্কের একটি হাসপাতালে সিসেক কোবানের চিকিৎসা চলছে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এসব ভিডিওতে যে কর্মকান্ড দেখা যাচ্ছে তা যুদ্ধাপরাধ বলে বিবেচিত হতে পারে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়া থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেবার পরপরই কুর্দি-নেতৃত্বাধীন এসডিএফের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে তুরস্ক। সিরিয়া বিষয়ক মার্কিন বিশেষ দূত জেমস জেফরি বলেছেন, অনেক লোক পালিয়ে গেছে কারণ তুরস্ক-সমর্থিত সিরিয়ান বিদ্রোহীদের ব্যাপারে তাদের ভয় আছে। জিহাদিদের বিরুদ্ধে তেমন কোন ব্যবস্থা নেয় নি তুরস্ক তুরস্কের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ আছে যে তারা সিরিয়ার জিহাদিদের বিরুদ্ধে খুব কমই ব্যবস্থা নিয়েছে। উত্তর পূর্ব সিরিয়ায় তুরস্কের সেনাবাহিনীর অগ্রাভিযান সাবেক মার্কিন বিশেষ দূত ব্রেট ম্যাকগার্ক বলছেন, "পৃথিবীর মোট ১১০টি দেশ থেকে ৪০ হাজার বিদেশী যোদ্ধা ইসলামিক স্টেটের হয়ে যুদ্ধ করতে সিরিয়া এসেছিল। তারা সবাই এসেছে তুরস্কের ভেতর দিয়ে।" তিনি বলেন, তিনি তুরস্ককে চাপ দেবার চেষ্টা করেছিলেন যেন আইএসকে ঠেকাতে তারা তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। "তুরস্ক বলেছিল তারা এটা করতে পারবে না। কিন্তু যেই কুর্দিরা সীমান্ত এলাকার একটা অংশ দখল করলো, তারা এমনভাবে সীমান্ত বন্ধ করে দিল যেন এটা একটা দেয়াল।" মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, তারা কথিত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ সম্পর্কে তুরস্কের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন বলেছেন, তুরস্ক এরকম যে কোন অভিযোগ তদন্ত করবে। তবে অনেক কুর্দি অধিকার কর্মীরই তুরস্কের তদন্তের প্রতিশ্রুতির ওপর কোন আস্থা নেই। গত এক দশকে বিভিন্ন সময় এমন অনেক বিচলিত হবার মতো ছবি ও ভিডিও বের হয়েছে - যা দৃশ্যত তুর্কী সেনাবাহিনী বা নিরাপত্তা বাহিনীর তোলা এবং এতে বন্দী কুর্দি ভিন্নমতাবলম্বীদের হত্যার দৃশ্য দেখা গেছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: তুরস্কের অভিযানের শিকার কুর্দি জনগোষ্ঠী কারা? ট্রাম্পের যে সিদ্ধান্ত বদলেছে সিরিয়া যুদ্ধের চিত্র সিরিয়ায় কি ইসলামিক স্টেট ফিরে আসতে পারে? উত্তর পূর্ব সিরিয়ায় কুর্দি মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযানের সময় তুরস্ক-সমর্থিত বাহিনী যুদ্ধাপরাধ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। +text: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসেবে ঢাকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মোট শনাক্ত ৭০ হাজারের মতো মানুষ। জরিপে দেখা যাচ্ছে, ঢাকার ৯% লোকই করোনাভাইরাস সংক্রমিত, তবে বস্তি এলাকায় সংক্রমণের হার কম, ৬%। কোন ধরনের উপসর্গ নেই এমন পরিবারেও সংক্রমিত ব্যক্তি রয়েছেন। সংক্রমিত ব্যক্তিদের বেশ বড় অংশেরই কোন উপসর্গ নেই। যেভাবে করা হলো জরিপটি: এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ঢাকা শহরের দুই সিটি কর্পোরেশনে স্বাস্থ্য বিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর'বি এবং সরকারের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর এই জরিপটি চালায়। ঢাকার দুই অংশে নানা আবাসিক এলাকা এবং ছয়টি বস্তি মিলিয়ে প্রায় চার হাজার পরিবারের ১২ হাজারের মতো মানুষের উপর এই জরিপটি করা হয়ে। করোনাভাইরাসের লক্ষণ আছে এবং লক্ষণ নেই - এমন দুই ধরনের পরিবার থেকেই নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করা হয়েছে। এই জরিপের ফল অনুযায়ী ঢাকার ৯% মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। ২০১১ সালে সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী ঢাকা শহরের জনসংখ্যা এক কোটি ২৫ লাখের মতো। তবে ২০১৭ সালে বিশ্বব্যাংকের এক হিসেব ছিল এক কোটি আশি লাখ। জরিপের ফল দিয়ে একটি মডেল দাঁড় করালে দেখা যায়, ঢাকার প্রায় ১৬ লাখের বেশি মানুষ করোনাভাইরাস আক্রান্ত। এই জরিপে যারা অংশ নিয়েছেন তার মধ্যে যাদের শরীরে সংক্রমণ পাওয়া গেছে তাদের ৯৩ শতাংশেরই জ্বর ছিল। চার হাজার পরিবারের উপর এই জরীপটি করা হয়েছে। ঢাকার বস্তিগুলোতে গড়ে সংক্রমণের হার বেশ কম, ৬% পাওয়া গেছে। ১৫ থেকে ১৯ বছরের কিশোর বয়সীদের মধ্যে ১২% কোভিড-১৯ পজিটিভ। সরকারি তথ্যের সাথে কেন পার্থক্য? স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ যাবৎ যত নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে তাতে ঢাকা শহরে এখনো পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মোট শনাক্ত ৭০ হাজারের মতো মানুষ। আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলছেন, "এই জরিপে আক্রান্তের সংখ্যাটা বেশি কারণ আমরা সরাসরি বাড়ি বাড়ি গিয়ে, লক্ষণ আছে বা নেই সেটা খুঁজে, তথ্য ও নমুনা সংগ্রহ করে জরিপটি করেছি। কিন্তু যে ডাটা সরকারিভাবে পাওয়া যাচ্ছে সেটা হল শুধু ল্যাবে পরীক্ষার ডাটা। শুধু যারা টেস্টের জন্য এসেছেন তাদের সংখ্যাটাই ধরা হয়।" দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তির প্রায় অর্ধেকই ঢাকায়। তার ভাষায়, বাংলাদেশের সকল মানুষকে নিয়ে জরিপ করা সম্ভব নয়। তিনি বলছেন, এরকম যেকোনো গবেষণাতেই দেখা যায় যে শুধু ল্যাবের সংখ্যার চেয়ে সরাসরি কমিউনিটিতে পরীক্ষার জন্য গেলে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি পাওয়া যায়। সরকার ঘোষিত উপাত্তের সাথে পার্থক্যের আরও কারণ উল্লেখ করে তিনি বলছেন, "এখন নমুনা কম সংগ্রহ হচ্ছে তাই পরীক্ষাও কম হচ্ছে। যেহেতু মৃদু লক্ষণই বাংলাদেশে বেশি দেখা গেছে তাই মানুষজন ল্যাবে পরীক্ষার জন্য কম যান। আমাদের অবজারভেশন হচ্ছে অনেকের মধ্যে শুরুতে যেমন ছিল সেই ভয়টা কমে গেছে। তারা যেহেতু দেখছে বেশিরভাগেরই মৃদু লক্ষণ তাই তারা মনে করছে পরীক্ষা করানোর প্রয়োজন কী?" এই জরিপের উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি চিত্র তৈরি করা যার উপর ভিত্তি করে করোনাভাইরাস মোকাবেলার কৌশল বের করা যাবে। তিনি বলছেন, মহামারির ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী এরকম জরিপের মাধ্যমে অনেক কিছু পরিকল্পনা করা হয়। কমিউনিটি পর্যায়ে প্রতিরোধের কৌশল বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের এপিসেন্টার বা কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ঢাকা। দেশে যত কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছে তার প্রায় অর্ধেকই ঢাকায়। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অনেকদিন ধরেই বলে আসছেন, সংক্রমণের যে সংখ্যা বাংলাদেশে পাওয়া যাচ্ছে তা সঠিক চিত্র নয়, কারণ যথেষ্ট পরীক্ষা হয়নি। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ডা. লেলিন চৌধুরী বলছেন, "আমাদের জনসংখ্যার তুলনায় অনেক কম সংখ্যক পরীক্ষা করেছি। টেস্ট করতে আসা মানুষজন নানাভাবে নিরুৎসাহিত হয়েছে। একদিন নাম লেখানো, একদিন এসে নমুনা দেয়া, রেজাল্ট পেতে দেরি, তারপর আবার দুশো টাকা ফি ধার্য করা, সব মিলিয়ে মানুষ করোনা পরীক্ষার বিমুখ হয়ে যায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য হা হচ্ছে যারা একান্তই না পেরে বাধ্য হয়ে পরীক্ষা করতে এসেছে, তাদের তথ্য শুধু পাওয়া যাচ্ছে।" পরীক্ষার ব্যাপারে অনেকেই নিরুৎসাহিত বোধ করেন। তিনি বলছেন, এতে দেশের প্রকৃত চিত্র পাওয়া যায় না। এরকম আংশিক চিত্র দিয়ে একটি বিজ্ঞানভিত্তিক পূর্বাভাস এবং মহামারি প্রতিরোধের কৌশল তৈরি করা সম্ভব নয়। তিনি বলছেন, "বাংলাদেশে করোনাভাইরাস মোকাবেলার জন্য কমিউনিটি ভিত্তিক সার্ভেইলেন্স অনেক বাড়াতে হবে। "টেস্ট যদি আমরা অনেক বেশি করতে পারতাম তাহলে রোগটির ব্যাপ্তি সম্পর্কে আমরা একটি ধারনা পেতে পারতাম।" কমিউনিটি পর্যায়ে যাদের উপসর্গ নেই তাদের শনাক্ত করার কথা বলছেন তিনি। কারণ, সংক্রমণ বেশ কিছুদিন যাবৎ একই রকম রয়েছে। মঙ্গলবার পরীক্ষা অনুপাতে শনাক্তের হার ছিল ২০%-এর উপরে। ডা. চৌধুরী বলছেন, "বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে আমরা দেখেছি করোনাভাইরাস সংক্রমণ পিক-এ উঠে তিনমাস পর আবার কমে আসে। কিন্তু বাংলাদেশে সংক্রমণ একটি বিশেষ উচ্চতায় ওঠার পর তা একই জায়গায় প্রলম্বিত হচ্ছে বাংলাদেশে মহামারি প্রতিরোধের বিষয়টা বিজ্ঞান ভিত্তিক নয় তাই এটি প্রলম্বিত হচ্ছে।" করোনাভাইরাস মোকাবেলায় কয়েকটি সফল দেশের নমুনা দিয়ে তিনি বলছিলেন, "যেসব দেশ করোনা সংক্রমণ ঘটার সাথে সাথে খুব দ্রুত লকডাউন, পরীক্ষা, কন্টাক্ট ট্রেসিং, আইসোলেশন, চিকিৎসা ইত্যাদি করেছে, ওই দেশগুলোই সবচেয়ে সফল। "আমাদের এখন প্রধান দায়িত্ব আমরা কোন পর্যায়ে আছি সেটা নির্ণয় করতে হবে। দেশের সবগুলো জায়গায় র‍্যান্ডম স্যাম্পলিং কি পরিমাণে মানুষ ইতিমধ্যেই ইনফেকটেড হয়েছে ও এক্সপোজড হয়েছে সেই ধারণাটা তৈরি করা। করোনাভাইরাসকে কিভাবে বাধা দেয়া হবে তার একটা রোডম্যাপ করতে হবে।" যেভাবে করোনাভাইরাসে শনাক্ত ব্যক্তিরা ফুসফুসের ব্যায়াম করতে পারেন নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাক�� কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় করোনাভাইরাস: ভ্যাকসিন পাওয়ার দৌড়ে বাংলাদেশ কতদূর? সরকার প্রতিদিনের যে হিসেব দিচ্ছে তাতে ঢাকায় শনাক্ত হওয়া কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ৭০ হাজার। কিন্তু সরকারের একটি বিভাগ একটি জরিপ করে যে হিসেব দিচ্ছে, তাতে ঢাকার সংক্রমিতের সংখ্যা বহু বহু গুন বেশি। ঢাকার জনসংখ্যা বিবেচনায় এনে হিসেব করলে ১৬ লাখের কম হবে না। +text: ডোন।ল্ড ট্রাম্পের ভাই-বোনেরা। ডান দিকে থেকে: ম্যারিয়ান, ডোনাল্ড, ফ্রেড জুনিয়ার, এলিজাবেথ এবং রবার্ট। ম্যারি ট্রাম্প ২৮শে জুলাই তার আত্মজীবনী প্রকাশ করতে যাচ্ছেন যার শিরোনামের বাংলা অনুবাদ হচ্ছে: 'হয় খুব বেশি, নয়তো খুব কম: আমার পরিবার থেকে কীভাবে তৈরি হলো বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক এক মানুষ'। বইটির প্রকাশনা সংস্থা সাইমন অ্যান্ড সুস্টার একথা জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান পার্টির জাতীয় সম্মেলনের কয়েক সপ্তাহ আগে বইটি প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। নভেম্বরে সাধারণ নির্বাচনের জন্য এই ন্যাশনাল কনভেনশন থেকেই মি. ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে লড়ার জন্য দলীয় অনুমোদন পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ম্যারি ট্রাম্পের ঐ আত্মজীবনীতে বর্ণনা করা হবে কীভাবে তিনি মি. ট্রাম্পের ব্যক্তিগত টাকাপয়সা সম্পর্কে গোপন দলিলপত্র তিনি নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকাকে সরবরাহ করেছিলেন। নিউইয়র্ক টাইমস পরে মি. ট্রাম্পের ওপর এক বিশদ তদন্ত-ভিত্তিক রিপোর্ট প্রকাশ করে। বালক ডোনাল্ড ট্রাম্প (সর্ব বামে)। পাশে ফ্রেড, এলিজাবেথ, ম্যারিয়ান এবং রবার্ট। রিপোর্টটি যুক্তরাষ্ট্রে সাংবাদিকতার সেরা পুরষ্কার পুলিৎজার প্রাইজ পায়। এতে দেখানো হয় কীভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প 'জালিয়াতি' করে কর ফাঁকি দেন এবং তার বাবার রিয়েল এস্টেট ব্যবসা থেকে বর্তমান মূল্যে ৪০ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ লাভ করেন। অ্যামাজন থেকে এই আত্মজীবনীর যে সারসংক্ষেপ প্রকাশ করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, তার চাচা "কীভাবে বিশ্বের স্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক নিরাপত্তা বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে উঠলেন সেই ব্যাখ্যা লেখিকা তার আত্মজীবনীতে দেবেন।" প্রেসিডেন্টের বাবা ফ্রেড ট্রাম্পের সঙ্গে তার বড় দুই ছেলে - ফ্রেড ট্রাম্প জুনিয়ার এবং ডোনাল্ডের অদ্ভুত এবং ক্ষতিকর সম্পর্কসহ এই পরিবারের ইতিহাসের নানা গল্প এ��� বইতে থাকবে বলে প্রকাশক সংস্থা জানিয়েছে। ফ্রেড ট্রাম্প আলঝাইমার্স রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর ডোনাল্ড তার বাবার সাথে কীরকম দুর্ব্যবহার করেছেন সেই প্রসঙ্গও বইটিতে থাকবে বলে মনে করা হয়। ম্যারি ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্টের বড় ভাই ফ্রেড ট্রাম্প জুনিয়ারের মেয়ে। ফ্রেড ট্রাম্প ১৯৮১ সালে ৪২ বছর বয়সে মারা যান। তিনি মদ্যপান সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছিলেন এবং হার্ট অ্যাটাকে তার অকাল মৃত্যু ঘটে। বাবা ফ্রেড ট্রাম্পের সাথে ডোনাল্ড। ছবিটি ১৯৮৮ সালে নিউইয়র্কের প্লাজা হোটেলে তোল।। বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: কোভিড-১৯ এর প্রথম জীবন রক্ষাকারী ওষুধ পাওয়া গেছে চীনের সাথে সীমান্ত সংঘর্ষে তিন ভারতীয় সেনা নিহত তুর্কি নাটক এরতুগ্রুল নিয়ে পাকিস্তানে উৎসাহ আর বিতর্ক তুর্কি নাটক এরতুগ্রুল নিয়ে পাকিস্তানে উৎসাহ আর বিতর্ক গত বছর ওয়াশিংটন পোস্টে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তার ভাই পাইলট হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তাকে রিয়েল এস্টেট ব্যবসাতে যোগদানের জন্য পীড়াপীড়ি করেন, যা নিয়ে তিনি এখনও অনুশোচনায় ভোগেন। চাচা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে ম্যারি ট্রাম্প অনেকটাই নিজেকে নিভৃতে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। এই দুই পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে বিশ বছর আগে একটি মামলার পর থেকে। ম্যারি ট্রাম্প এবং তার ভাই তৃতীয় ফ্রেড ট্রাম্প ২০০৪ সালে ঐ মামলা দায়ের করে অভিযোগ করেছিলেন যে তাদের দাদার সম্পত্তি থেকে তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। তারা জানান, তাদের দাদা যখন ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হন তখন ১৯৯১ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার বোনেরা মিলে 'টাকা দিয়ে এবং প্রভাব খাটিয়ে' তার উইলটি বদলে দিয়েছিলেন। নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজ পত্রিকা এ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ম্যারি ট্রাম্প সে সময় ঐ পত্রিকাকে বলেছিলেন, ঐ মামলা নিয়ে তার চাচা এবং ফুপুরা যেসব কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন 'সে জন্য তাদের লজ্জা হওয়া উচিত।' "এই পরিবারটি যেমন, তাতে ঐ ঘটনাগুলির সাথে অর্থের কোন যোগাযোগ ছিল না একথা বলা হবে বোকামির নামান্তর।" স্ত্রী মেলানিয়ার সাথে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। দৃশ্যত ঐ মামলার প্রতিশোধ হিসেবে ট্রাম্প কোম্পানি যখন ম্যারি ট্রাম্প এবং তার ভাইয়ের মেডিকেল ইন্সিওরেন্স বাতিল করে দেয় তখন তারা ঐ সিদ্ধান্তে�� বিরুদ্ধে আরেক দফা মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের বাইরে মামলাটির মীমাংসা করা হয়। কিন্তু এ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায় না। ম্যারি ট্রাম্পের নামে পোস্ট করা টুইট থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের যেদিনটিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন সেই দিনটিতে তিনি খুবই বিষণ্ণ ছিলেন। তার পোস্টে লেখা হয়েছিল: "এটা আমার জীবনের এক কালো রাত।" তার আরেকটি টুইটে পরাজিত প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটন সম্পর্কে মন্তব্য করা হয়: "একজন অসাধারণ মানুষ এবং রাজনীতিক।" মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাতিজি এক বই লিখছেন যেটি চাচা সম্পর্কে নানা কেচ্ছা-কাহিনীতে ভরপুর থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। +text: বাইডেন সরকার চায় সৌদি আরবের সাথে সম্পর্কে আইনের শাসন এবং মানবাধিকারকে অগ্রাধিকার দেয়া হোক। হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব ইয়েন সাকি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন গুরুত্বপূর্ণ মিত্র-দেশ সৌদি আরবের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কটিকে পূন:মূল্যায়ণ করতে চান। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার মেয়ের স্বামী জ্যারেড কুশনারের মাধ্যমে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন, এবং ইয়েমেনের লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া অস্ত্র ব্যবহারে ব্যাপক স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। এখন মনে হচ্ছে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বাদশাহ সালমানের সাথে সরাসরি কাজ করতে চান, যদিও ৮০ বছর বয়সী বাদশাহর স্বাস্থ্য ভাল না। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নীতিমালায় আইনের শাসন এবং মানবাধিকারকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। প্রশ্ন হলো নতুন এই অবস্থান এই দুই দেশের জন্য কী অর্থ বহন করে? আর ওয়াশিংটন এবং রিয়াদের জন্য এখানে ঝুঁকিগুলো কোথায়? কৌশলগত পরিবর্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সৌদি যুবরাজের সাথে গড়ে তুলেছিলেন ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। আরও পড়তে পারেন: 'নতুন' মধ্যপ্রাচ্যে জো বাইডেনের অগ্নিপরীক্ষা মাথা কে নোয়ালো - সৌদি আরব, আমিরাত নাকি কাতার? যে তিনটি বিষয় নিয়ে সঙ্কটে রয়েছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সৌদি যুবরাজকে সাধারণত ডাকা হয় এমবিএস নামে। তার জন্য মার্কিন নীতিতে পরিবর্তনের অর্থ হলো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জমানায় যে সুদিন তার জন্য এসেছিল, কার্যত তার অবসান ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কৌশলগত ও নিরাপত্তার সম্পর্�� বজায় রাখতে হলে হোয়াইট হাউজের নতুন চিন্তাধারাকে মেনে নিতে হবে এবং প্রয়োজনে স্বার্থত্যাগ করতে হবে। ইয়েমেনে সৌদি-নেতৃত্বাধীন যুদ্ধে কোন মার্কিন সমর্থন পাওয়া যাবে না। সৌদির বলছে, তাতে কোন সমস্যা নেই। তারাও এই লড়াইয়ের অবসান চাইছে। কাতারের সাথে সম্পর্ক মেরামত করতে হবে, বলছে মার্কিনীরা। ইতোমধ্যেই এটা করা হয়েছে। ক্যাপিটল হিল থেকে বলা হয়েছে, সৌদি মানবাধিকার কর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। গত সপ্তাহেই শীর্ষস্থানীয় নারী অধিকার কর্মী লুজায়েইন আল-হাতলুলকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে তাকে পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। মার্কিন রণতরী ইউএসএস কুইন্সিতে বাদশাহ ইবন সৌদের সাথে প্রেসিডেন্ট রুজেভেল্টের বৈঠক। সৌদি-মার্কিন সম্পর্কের শেকড় অনেক গভীরে। ১৯৪৫ সালে এক মার্কিন রণতরীতে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা বাদশাহ ইবন সৌদের সাথে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের যে ঐতিহাসিক বৈঠক হয়েছিল সেটা ছিল এই সম্পর্কের সূচনা। এরপর নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে সৌদি-মার্কিন সম্পর্ক বজায় রয়েছে - ১৯৭৩ সালের তেল অবরোধ, ১৯৯১ সালের পারস্য উপসাগরীয় যুদ্ধ, এবং ২০০১ সালের নাইন-ইলেভেন হামলা, যেখানে আল-কায়েদার বেশিরভাগ আত্মঘাতী হামলাকারী ছিল সৌদি নাগরিক। জো বাইডেন নির্বাচিত হওয়ার পর সৌদি সরকারের তরফ থেকে তার প্রতি অভিনন্দন-বার্তা পাঠাতে বেশ কিছু দিন সময় লেগেছিল। তবে হোয়াইট হাউজের নতুন প্রশাসন নিয়ে সৌদিরা অস্বস্তিতে পড়লেও তারা যে রাতারাতি যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে নতুন বন্ধু খুঁজতে যাবে এমনটা মনে হয় না। তারা জানে যে যুক্তরাষ্ট্রের ৫ম নৌবহর, যেটি এখন পারস্য উপসাগরে মোতায়েন রয়েছে, ওয়াশিংটন সেটিকে সরিয়ে আনলে সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় শত্রু-দেশ ইরান সেই জায়গা দখল করবে, এবং ঐ অঞ্চলে তারা সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশে পরিণত হবে। অসুস্থতার জন্য বাদশাহ সালমান এখন আর দৈনন্দিন রাজকার্য চালাতে পারেন না। তবে যুক্তরাষ্ট্র এখনও বলছে যে আত্মরক্ষার কাজে তারা সৌদি আরবকে সহায়তা দিয়ে যাবে। ইয়েমেন থেকে হুথি বিদ্রোহীরা সৌদি আরবে যেসব বিস্ফোরক-বাহী ড্রোন পাঠাচ্ছে, তারা সেগুলোও ঠেকিয়ে দিতে সহায়তা করবে। সম্পর্কিত খবর: সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদের হানিমুনের দিন শেষ? ইরান পরমাণু বোমা বানালে আমরাও বানাবো: সৌদি যুবরাজ সৌদি আরবে আল-হাথলুলের মুক্তির পেছনে কী হিসেব-নিকেশ? মসনদের পেছনের শক্তি মি. বাইডেন যে কৌশল নিয়েছেন তাতে যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও ঝুঁকি রয়েছে। বাদশাহ সালমান খুবই অসুস্থ, এবং সৌদি আরবের দৈনন্দিন দেশ পরিচালনার কাজটি তিনি করতে অক্ষম। ফলে যুক্তরাষ্ট্র পছন্দ না করলেও তাদের হয়তো সৌদি যুবরাজের সাথে আগামী কয়েক দশক ধরে কাজ করতে হতে পারে। বেশিরভাগ পশ্চিমা দেশের কাছেই এমবিএস একটি বিষাক্ত নাম। তার নির্দেশেই ২০১৮ সালে সাংবাদিক জামাল খাশোগজিকে হত্যা করা হয় বলে গভীর সন্দেহ রয়েছে। তবে যুবরাজ এই অভিযোগ অস্বীকার করে থাকেন। তবে সৌদি আরবের ভেতরে এমবিএস বেশ জনপ্রিয়, বিশেষভাবে তরুণ প্রজন্মের কাছে। সামাজিক সংস্কারের লক্ষ্যে যুবরাজের নেয়া পদক্ষেপগুলোর তারা প্রশংসা করেন। ৩৫ বছর বয়সী এই যুবরাজ যেমন তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয়, তেমনি এরই মধ্যে তিনি দেশের সর্বময় ক্ষমতার মালিক হয়েছেন। সৌদি সশস্ত্র বাহিনী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ন্যাশনাল গার্ড - সব বাহিনী এখন তার সরাসরি নিয়ন্ত্রণে। অত্যন্ত চাতুর্যের সাথে তিনি তার পথের সব কাঁটা দূর করেছেন। এর মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পছন্দের একজন সৌদি আরবের ভবিষ্যৎ রাজা হিসেবে যাকে মনে করা হচ্ছিল। তিনি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফ। ২০১৭ সালে এক রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এমবিএস তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেন এবং এখনও বন্দি করে রেখেছেন। ভঙ্গুর পথ তবে সৌদি আরবের ওপর চাপ প্রয়োগের প্রশ্নে অনেক সময়ই যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদামত ফলাফল দেখা যায়নি। ২০০৫ সালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিৎসা রাইস মধ্যপ্রাচ্যে একনায়কতন্ত্রের নিন্দা জানিয়েছিলেন এবং গণতন্ত্রকে বরণ করে সৌদিদের অবাধ নির্বাচন আয়োজন করতে বলেছিলেন। সৌদি শাসকরা তখন পরীক্ষামূলক-ভাবে গণতন্ত্রের স্বাদ নেয়ার ব্যবস্থা করেছিল, এবং সীমিত আকারে পৌর নির্বাচনের আয়োজন করছিল। কিন্তু ফলাফলে দেখা গেল কট্টর, ও প্রধানত পশ্চিমা-বিরোধী, ইসলামপন্থী প্রার্থীরাই ঐ নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিলেন। পরে, সৌদি নেতারা যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছিল: "যা চাইবেন তা একটু সতর্কভাবে চাইবেন।" বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: মঙ্গল গ্রহে নাটকীয় অবতরণের পর এখন যেসব অনুসন্ধান চালাবে নাসার নভোযান কেন প্রথা ভেঙ্গে ঋতুমতী অবস্থায় পুজো করলেন পশ্চিমবঙ্গের এক ছাত্রী সৌদি আরবের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সরকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতিমালা থেকে যে আরও সরে আসছে তার ইঙ্গিত মিলেছে চলতি সপ্তাহে। +text: সুনামিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পালু শহরে সরকারি কর্তৃপক্ষ স্বীকার করছেন, মৃতের সংখ্যা আরো অনেক বাড়তে পারে। কারণ, অনেক মানুষ এখনো নিখোঁজ। এছাড়া চরম ক্ষতিগ্রস্থ ডঙ্গালা নামে একঠি শহরে উদ্ধারকর্মীরা এখনো যেতে পারেনি। ঐ শহরে প্রায় তির রাখ মানুষ বসবাস করে। পালু শহরটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে নিহতদের বেশিরভাগই সুলাওয়েসির পালু শহরের বাসিন্দা, যেখানে প্রায় তিন মিটার উঁচু জলোচ্ছ্বাস আঘাত হানে। স্থানীয় বিমানবন্দর অংশত ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে ইন্দোনেশিয়ার কিছু সামরিক বিমান সেখানে অবতরণ করতে পেরেছে। সুলাওয়েসি দ্বীপ থেকে অল্প দূরে সাগরের প্রায় দশ কিলোমিটার গভীরে শুক্রবার এই ভূমিকম্প হয়েছিল। ভূমিকম্পের পরপরই সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়। সুনামি যখন আঘাত হানে, তখন লোকজন কিভাবে প্রাণভয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল, তার অনেক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়েছে। ভূমিকম্পের পর অনেক শক্তিশালী আফটার-শক পালু শহরকে কাঁপিয়ে দিচ্ছিল। সুনামি যখন আঘাত করে তখন অনেকেই সাগরতীরে বেড়াচ্ছিলেন শত শত ঘরবাড়ী ভেঙ্গে পড়েছে। অনেক হাসপাতাল, হোটেল এবং শপিং সেন্টারও ধসে গেছে। উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে, কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় অভিযান ঠিকমত চালানো যাচ্ছে না। ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ মোকাবেলা সংস্থা বলছে, বহু লোক এই ভূমিকম্পে নিহত এবং আহত হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। সংস্থার মুখপাত্র সুতপো পারো নাগরোহো শনিবার জানান , সর্বশেষ যে তথ্য তাদের কাছে আছে, সে অনুযায়ী ৩৮৪ জন নিহত হয়েছে, নিখোঁজ আছে আরও ২৯ জন। এরা সবাই পালু শহরের একটি এলাকার মানুষ। এছাড়া আরও ৫৪০ জন আহত হয়েছে। তিনি আরও জানাচ্ছেন, সাগর তীর বরাবর নিহতদের অনেকের লাশ খুঁজে পাওয়া যায়। যখন সুনামি আঘাত হানে, তখন সাগরতীরেই অনেকে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। অনেকে প্রায় ছয় মিটার উঁচু পর্যন্ত গাছে আশ্রয় নিয়ে জীবন বাঁচিয়েছে। খোলা জায়গায় আহতদের চিকিৎসা চলছে ভূমিকম্প এবং সুনামিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পালু এবং ডংগালা শহরে প্রায় ছয় লাখ মানুষ থাকে। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো বলেছেন, উদ্ধার অভিযানে সাহায্য করার জন্য সেন��বাহিনী পাঠানো হচ্ছে। ২০০৪ সালে এশিয়ায় যে ভয়ংকর সুনামি হয়েছিল, তখন ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপেই নিহত হয়েছিল এক লাখ ২০ হাজার মানুষ। ইন্দোনেশিয়া খুবই ভূমিকম্প প্রবণ দেশ, পুরো প্রশান্ত মহাসাগর ঘিরে ভূমিকম্প প্রবণ যে বৃত্ত বা যেটি রিং অব ফায়ার নামে পরিচিত, তার উপরই দেশটি। বিশ্বের সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলোর অর্ধেকই সেখানে। পালু শহরটি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে মাত্র গত মাসেই ইন্দোনেশিয়ার লম্বক দ্বীপে আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে, সেখানে নিহত হয় ৪৬০ জন। ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ মোকাবেলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবারের ভূমিকম্প এবং সুনামিতে দেশটির সুলাওয়েসি দ্বীপে এ পর্যন্ত ৩৮৪ জন মানুষ নিহত হয়েছে। +text: পাঁচ মাসে দুবার লটারি জিতেছেন মেলহিগ কিন্তু মাত্র পাঁচ মাসের ব্যবধানে দুবার লটারি জিতে কপাল খুলে গেছে কানাডার এক অভিবাসীর। এই ভাগ্যবানের নাম মেলহিগ মেলহিগ। বয়স ২৮ বছর। দুটি লটারিতে তিনি জমিতেছেন মোট ৩৫ লাখ কানাডিয়ান ডলার। মেলহিগ এসেছেন আফ্রিকা থেকে। এখন থাকেন কানাডার উইনিপেগে। এই অর্থ পাওয়ার পর মেলহিগ এখন পড়াশোনায় ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। "আমি এখনো তরুণ। কিভাবে আরও বড় হতে পারি, সেটা আমাদের ভাবা উচিৎ", বলছেন তিনি। গত এপ্রিলে প্রথম লটারি জেতেন মেলহিগ। সেবার পেয়েছিলেন পনের লাখ ডলার। সেই অর্থ দিয়ে তিনি একটি বাড়ি কেনেন। আগের ফ্ল্যাট ছেড়ে দিয়ে সেই বাড়িতে উঠেছেন। "আমাদের সব কিছু এখন নতুন। বাড়ির সামনে পেছনে চমৎকার খোলা জায়গা। কাছেই ভালো স্কুল আছে। আমাদের বেশ ভালো লাগছে। " আরও পড়ুন: খ্রিস্টান যাজকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে সরব সন্ন্যাসিনীরা বাংলাদেশে গুজবের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামছে সরকার কুকুরের মাংস খাওয়া বন্ধের পক্ষে ভিয়েতনামের রাজধানী কিন্তু গত আগষ্টে মিস্টার মেলহিগের প্রতি ভাগ্য আবার সুপ্রসন্ন হয়। এবার তিনি লটারিতে জেতেন বিশ লাখ ডলারের জ্যাকপট। লটারিতে জেতা অর্থে নিজের ব্যবসা গড়ে তুলতে চান তিনি। তার ইচ্ছে একটি পেট্রোল স্টেশন বা কার ওয়াশ সেন্টার খোলা। এরপর তিনি লেখাপড়ায় ফিরে যেতে চান। "আমার ইচ্ছে স্কুলে ফিরে যাওয়া। আমি ভালো করে ইংরেজী শিখতে চাই। তারপর একটা ভালো কাজ শিখতে চাই। কাঠমিস্ত্রির কাজ বা এরকম কিছু।" রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার আশায় বহু মানুষ সপ্তাহের পর সপ্তাহ লটা��ির টিকেট কেনেন। কিন্তু সারাজীবনেও হয়তো তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয় না। +text: ভাঙা হচ্ছে বাবরি মসজিদ। ৬ ডিসেম্বর, ১৯৯২ এরা হলেন মুম্বাইতে ভারতীয় মুসলিম মহিলা আন্দোলনের কর্ণধার ও সমাজকর্মী নূরজাহান সাফিয়া নিয়াজ, দিল্লিতে রাজনৈতিক অ্যাক্টিভিস্ট ও অধ্যাপক নাজমা রেহমানি এবং কলকাতায় শিক্ষাবিদ ড: মীরাতুন নাহার। তারা কেউ কেউ সরাসরি প্রশ্ন তুলছেন, "১৯৯২-র ৬ ডিসেম্বর যদি বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলার তীব্র দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাটি না-ঘটত, তাহলেও কি আজ সুপ্রিম কোর্ট এই রায় দিতে পারত?" কেউ আবার মনে করছেন, ওই কলঙ্কজনক অধ্যায়কে পেছনে ফেলে ভারতের এখন এগিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে - আর সেখানে এই রায় অযোধ্যা বিতর্কে একটা 'ক্লোজার' এনে দিতে পারে। মন্দির তৈরির পক্ষেই রায় দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট নিরাপত্তার চাদরে মোড়া অযোধ্যা। ৯ নভেম্বর, ২০১৯ কেউ আবার আজকের দিনটিকে 'ভারতীয় সংবিধানের জন্য একটি চরম অমর্যাদার মুহুর্ত' হিসেবেই দেখছেন। তাদের সঙ্গে বিবিসি বাংলার কথোপকথনের সারসংক্ষেপ নিচে তুলে ধরা হল। অধ্যাপক নাজমা রেহমানি "আমার প্রশ্ন হল, বাবরি মসজিদই বলুন বা বিতর্কিত কাঠামো - আজও যদি সেটা অক্ষত অবস্থায় ওখানে দাঁড়িয়ে থাকত, তাহলেও কি সুপ্রিম কোর্ট আজকের এই রায় শোনাতে পারত?" তা ছাড়া প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের (আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া) একটি রিপোর্টকে আদালত সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেছে। কিন্তু সেই রিপোর্টের কি ঠিকমতো বিশ্লেষণ করা হয়েছিল? আমি বলতে চাইছি, ওই রিপোর্টের বক্তব্য অনুযায়ী কোর্ট মেনে নিয়েছে মসজিদের নিচে কিছু একটা স্থাপনা ছিল। কিন্তু সেটা কি কোনও মন্দির, বা মন্দির হলেও রামের মন্দির না কি অন্য কোনও দেবতার - সেটাই বা কে বলল? অধ্যাপক নাজমা রেহমানি আসলে প্রশ্নটা তো শুধু এক টুকরো জমির নয়, এখানে ভারতের সামাজিক সম্প্রীতির চেহারা কিংবা এ দেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থানের চিত্রটাও কিন্তু এই মামলার সঙ্গে জড়িত। আমার ধারণা যতটা না সাক্ষ্যপ্রমাণের ওপর ভিত্তি করে, তার চেয়েও বেশি দেশের সামাজিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করেই কোর্ট এই রায় দিয়েছে। রায়টা দেখে অন্তত সে রকমই মনে হচ্ছে। দেশের হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায় এই রায়কে এখন কীভাবে নেবে, সেটা ভেবে আমি সত্যিই উদ্বিগ্ন। এখন পরিবেশটা খুব সংবেদনশীল, কড়া নিরাপত্তায় সব মুড়ে রাখা আছে বলে প���িস্থিতি হয়তো শান্ত আছে। কিন্তু এভাবে কতদিন থাকবে? নূরজাহান সাফিয়া নিয়াজ আরও অনেকের মতো আমরাও এই রায়কে স্বাগত জানাই। আর এটাই হয়তো প্রত্যাশিত ছিল। বছরের পর বছর ধরে এই ইস্যুটাকে কাজে লাগিয়ে যে সংঘাত আর রক্তপাত হয়েছে, আশা করি এবারে তার অবসান হবে। বাবরি-রামমন্দির পেছনে ফেলে আমাদের এখন আরও কত কিছু নিয়ে ভাবার আছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্যে মনোযোগ দেওয়া দরকার, জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকানোর কথা ভাবা দরকার। আমাদের অস্তিত্ত্ব যখন সঙ্কটে, তখন কতদিন আর ওসব নিয়ে পড়ে থাকব? কাজেই আমি খুশি, ইট'স ফাইনালি ওভার। নূরজাহান সাফিয়া নিয়াজ ৬ ডিসেম্বরের কথা যদি বলেন, সেদিন ভারতের মুসলিম সমাজ ও এদেশের সামাজিক বন্ধনের সঙ্গে যা হয়েছিল তার মতো দুর্ভাগ্যজনক বোধহয় কিছুই আর হতে পারে না। কিন্তু সেটা নিয়ে আর কতদিন পড়ে থাকব? একটা কোনও প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তো একদিন এই বিতর্কের সমাধান করতেই হত, তাই না? এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট একটা গ্রহণযোগ্য সমাধান এনে দিতে পেরেছে বলেই আমরা মনে করি। এই রায়ে হয়তো অনেকেই শেষ পর্যন্ত খুশি হবেন না। কিন্তু কে খুশি আর কে অখুশি হল, তাতে কী এসে যায়? বিষয়টার একটা যে নিষ্পত্তি হল, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। হো গয়া আভি - ইট'স ওভার! ড: মীরাতুন নাহার একটা সম্পূর্ণ 'তৈরি করা বিবাদ' যে এভাবে দেশের শীর্ষ আদালত পর্যন্ত গড়াতে দেওয়া হল, আমি তাতে প্রচন্ড ক্ষুব্ধ। দেশপ্রেমী একজন ভারতীয় নাগরিক হিসেবে আমি ভাবতেই পারি না, যাদেরকে আমরা দেশের ক্ষমতায় বসিয়েছি তারা কীভাবে ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতিকে এভাবে উসকানি দিতে পারেন! ড: মীরাতুন নাহার শুধুমাত্র নিজেদের সঙ্কীর্ণ দলীয় স্বার্থের কথা ভেবে তারা ভারতের মহান সংবিধানকেও অপমান করলেন। জমির দখল নিয়ে বিবাদ, সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ দুটো পরিবারের মধ্যে হয়, কখনও বা কোর্টেও গড়ায় - এটাই চিরকাল জেনে এসেছি। কিন্তু সেই জমির বিবাদকে ঘিরে দেশের দুটো ধর্মীয় সম্প্রদায়কেও যে লড়িয়ে দেওয়া যায় তা কখনও ভাবতেও পারিনি - আর সে কারণেই পুরো বিষয়টা আমার কাছে এতটা কষ্টদায়ক! আজকের রায় নিয়ে আর কী বলব? কোর্টে গেলে যা হওয়ার তা-ই হয়েছে, তাই সেটা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার মানে হয় না। আমার প্রশ্ন তাই একটাই, এই যে বিবাদ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া হয়েছিল সেটা কি আপনা থেকেই তৈরি হয়েছিল না কি সচেতনভাবে গড়ে তোলা হয়েছিল? অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ-রামমন্দির বিতর্কে সুপ্রিম কোর্ট শনিবার রায় ঘোষণার পর তাদের প্রতিক্রিয়া জানতে বিবিসি বাংলা কথা বলেছে ভারতের তিনটি প্রধান শহরে তিনজন বিশিষ্ট মুসলিম নারীর সঙ্গে। +text: উদ্ধার অভিযানের আগে উদ্ধারকারী দলের সবাইকে রেখে বাকীদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। উদ্ধারকারী দল স্থানীয় সময় সকাল দশটায় গুহায় প্রবেশ করেছে বলে ঘটনাস্থলেই এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন একজন সরকারি কর্মকর্তা। এর আগে উদ্ধারকারী দল, ডুবুরী, চিকিৎসক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের রেখে বাকী সবাইকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। গত ২৩শে জুন কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচ গুহার ভেতরে যাওয়ার পর আর বের হতে পারেননি। ছবিতে গুহার ভেতরে কিশোরদের দেখা যাচ্ছে যেই গুহায় আটকে পড়েছে কিশোর ফুটবলার দল ও তাদের কোচ। ধারণা করা হয়, গুহায় ঢোকার পরপরই প্রচণ্ড বৃষ্টি শুরু হয় এবং এতে করে তাদের বাইরে আসার পথ বন্ধ হয়ে যায়। তেরজন বিদেশী ডুবুরী ছাড়াও থাই নৌ বাহিনীর আরও পাঁচজন এ উদ্ধার অভিযানে অংশ নিচ্ছেন। উদ্ধারকাজে বেশ ঝুঁকি আছে বলে মনে করা হচ্ছে। আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডের গুহা থেকে বাবা-মায়ের কাছে চিঠি গুহা থেকে ১৩ জনকে বের করার সম্ভাব্য উপায়গুলো কী? 'গুহায় আটকাপড়া থাই দলটির বেরুতে কয়েকমাস লেগে যাবে' থাইল্যান্ডের ফুটবল দলকে অবশেষে জীবিত অবস্থায় খুঁজে পাওয়া গেছে থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে গুহায় প্রায় দু সপ্তাহ ধরে আটকে থাকা ১২ কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচকে উদ্ধারে অভিযান শুরু হয়েছে। +text: নাগাল্যান্ডের বিরোধী নেতা টি আর জেলিয়াং। রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও বর্তমানে বিধানসভার বিরোধী নেতা মি জেলিয়াং শনিবার বলেছেন, "নাগাল্যান্ডের সব রাজনৈতিক দল, এনজিও, আদিবাসী হোহো, ছাত্র সংগঠন, গ্রাম কাউন্সিল ও প্রত্যেক রাজ্যবাসীকে এই বাংলাদেশীদের বিরুদ্ধে একজোট হতে হবে।" এমনকি তিনি এই অনুপ্রবেশ রোখার জন্য সরকারের কাছে একটি অর্ডিন্যান্স আনারও দাবি জানিয়েছেন। নাগাল্যান্ডের প্রতিবেশী রাজ্য আসামে আগামিকাল (৩০শে জুলাই) প্রকাশিত হতে যাচ্ছে জাতীয় নাগরিক তালিকা বা এনআরসি-র চূড়ান্ত খসড়া, যেখানে রাজ্যের বেশ কয়েক লক্ষ বাসিন্দার নাম তা থেকে বাদ পড়তে পারে বলে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এনআরসি থেকে যাদের নাম বাদ পড়বে, ভারতের বুকেই তারা কার্যত 'রাষ্ট্��হীন নাগরিকে' পরিণত হবেন বলে অনেকেই মনে করছেন। আসামের এনআরসি তালিকাভুক্ত হতে না-পারলে অনেকেই মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মণিপুর বা ত্রিপুরার মতো আশেপাশের রাজ্যগুলোতে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করতে পারেন বলে ওই রাজ্যগুলোর ধারণা। আসামে এনআরসি তালিকায় নাম ওঠাতে নানা নথিপত্র জমা দিতে হচ্ছে। আমাদের পেজে আরও পড়ুন: যে কারণে নাগরিকত্ব নিয়ে শঙ্কায় আছে আসামের বাংলাভাষীরা ফাইভ জি ও এর ব্যবহার সম্পর্কে যেসব তথ্য না জানলেই নয় যে টানেল দেখে খেপেছে ক্রোয়েশিয়ার মানুষ এই পটভূমিতেই মি জেলিয়াং বলেছেন, "আসাম থেকে যে হাজারে হাজারে বাংলাদেশী অভিবাসী আমাদের রাজ্যে ঢুকবেন, তাদের হাত থেকে কি আমরা নাগাল্যান্ডকে রক্ষা করতে প্রস্তুত?" ডিমাপুরে রাজ্যের জনগণের উদ্দেশ্যে প্রকাশ্য আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, "বিশেষ করে আসামের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোকে এ ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে।" "বাংলাদেশী অভিবাসীরা নাগাল্যান্ডে ঢোকার চেষ্টা করলে যে কোনওভাবে হোক তাদের রুখতেই হবে", বলেছেন মি জেলিয়াং। অভিবাসন সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য একটি সরকার যাতে অর্ডিন্যান্স আনে, সেই দাবিও জানান তিনি। তবে আসাম সরকার অবশ্য বারে বারেই বলছে, এনআরসি তালিকা থেকে যাদের নাম বাড় পড়বে তাদের সব নাগরিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে বলে মনে করার কোনও কারণ নেই। আসামের প্রভাবশালী মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। আসামের প্রভাবশালী ক্যাবিনেট মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এদিনও বলেছেন, "যারা এনআরসি-ভুক্ত হতে পারবেন না তাদের কোনও অধিকার সঙ্কুচিত করা হবে না!" এনআরসি তালিকা থেকে যাদের নাম বাদ পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, আসামে তাদের অনেককেই সাধারণভাবে 'বিদেশি' বা 'বাংলাদেশী অভিবাসী' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। তবে তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গেও ভারতের কখনও কোনও কথাবার্তা হয়নি। দিনকয়েক আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম যখন দিল্লি সফরে এসেছিলেন, তখন এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন এটা সম্পূর্ণই 'ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়'। মি ইমাম তখন বলেন, "এটা পুরোপুরি আসাম তথা ভারতের নিজেদের ব্যাপার। আমাদের এ নিয়ে কিছু জানা নেই, আর কিছু বলারও নেই!" ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য নাগাল্যান্ডের বিরোধী নেতা টি আর জেলিয়���ং তার রাজ্যে 'অবৈধ বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী'দের ঢল রোখার জন্য সবাইকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। +text: যুক্তরাষ্ট্র ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার পর ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বাড়াতে থাকে। একটি পারমাণবিক বোমা তৈরি করার জন্য শতকরা ৯০ ভাগের বেশি মাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন। সে হিসেবে ইরানের কাছে এখনও ওই পরিমাণে ইউরেনিয়াম নেই। তবে ২০১৫ সালের চুক্তিতে ইরানের এই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ৪% এর নিচে রাখার কথা ছিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, যুক্তরাষ্ট্রকে এই চুক্তি থেকে সরিয়ে এনে পুনরায় নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেন। এর পর থেকেই ইরান এই চুক্তি লঙ্ঘন শুরু করে। তবে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া এবং চীন সবাই আশা করে যুক্তরাষ্ট্র আগের অবস্থানে ফিরে আসবে। ইরান কী পরিকল্পনা করছে? আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে যে, ইরান ২০% পর্যন্ত বিশুদ্ধ পরমাণু সমৃদ্ধকরণের বিষয়ে তাদের পরিকল্পনার কথা ফর্দো ফুয়েল এনরিচমেন্ট প্লান্টকে জানিয়েছে। ইরানের এই পরমাণু সমৃদ্ধকরণ প্রকল্পটি দেশটির একটি পাহাড়ের ভেতরে নির্মিত একটি স্থাপনা। সংস্থাটি আরও বলছে: "সংস্থাকে যে চিঠিটি ইরান দিয়েছে, সেখানে এই সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম কখন থেকে হবে তা বলা হয়নি।" ২০১৯ সালের পরমাণু চুক্তিতে শর্ত দেয়া হয়েছিল যে ইরান ৩.৬৭% এর বেশি বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না, কিন্তু সেই শর্ত তারা লঙ্ঘন করেছে। তবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা তখন থেকেই ৪.৫% পর্যন্ত স্থিতিশীল রয়েছে। তবে দেশটির শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিযাদে হত্যার প্রতিক্রিয়ায় গত মাসে ইরানের পার্লামেন্ট পরমাণু সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ২০% পর্যন্ত বৃদ্ধি করা বিষয়ক একটি আইন পাস করে। ওই বিলটিতে বলা হয়েছে হয়েছে যে, ইরানের তেল ও আর্থিক খাতের উপর নিষেধাজ্ঞাগুলো দুই মাসের মধ্যে শিথিল না করলে ইরানের সরকার ২০% বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কাজ আবারও শুরু করবে। নাতান্জ এবং ফর্দো ইরানের পরমাণু স্থাপনায় জাতিসংঘের পরিদর্শকদের যেন যেতে দেয়া না হয় সে বিষয়ে ওই আইনে আদেশ দেয়া হয়েছে। ইরানের বুশেহর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম কী? ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইড গ্যাস সেন্ট্রিফিউজে ঢুকিয়ে, পরমাণু ফিশনের জন্য সবচেয়ে উপযু���্ত আইসোটপটি আলাদা করে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করা হয়। এটি ইউ -২৩৫ নামে পরিচিত। স্বল্প-সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামে, ইউ -২৩৫ এর ঘনত্ব সাধারণত ৩-৫% হয়। বাণিজ্যিকভাবে গড়ে ওঠা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোয় এই স্বল্প-সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম, জ্বালানী উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের ঘনত্ব ২০% বা তার বেশি হতে পারে এবং এতো সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম গবেষণার চুল্লিগুলোয় ব্যবহৃত হয়। তবে অস্ত্র-গ্রেড ইউরেনিয়াম ৯০% বা তারও বেশি সমৃদ্ধ হতে হয়। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সীমাবদ্ধ করা কেন প্রয়োজন? পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ক্রমবর্ধমান থাকলে এটি দেশটির "ব্রেক-আউট টাইম" কমে যেতে পারে। তাত্ত্বিকভাবে "ব্রেক-আউট টাইম" বলতে পারমাণবিক বোমা বিকাশ করার সময়কে বোঝায়। ইরান জোর দিয়ে বলে আসছে যে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যেই পরিচালিত হচ্ছে। তবে ইরান একটি পারমাণবিক বোমা তৈরি করছে এমন সন্দেহে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘ ২০১০ সালে দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে স্বাক্ষরিত ২০১৫ সালের চুক্তিতে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার শর্তে দেশটির পরমাণু কর্মসূচি সীমাবদ্ধ করার কথা বলা হয়েছিল। চুক্তি পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা কি রয়েছে? প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই চুক্তিকে "অপচয় এবং যাচ্ছেতাই" আখ্যায়িত করে ২০১৮ সালের মে মাসে চুক্তি থেকে সরে আসেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে এই চুক্তিতে ফিরিয়ে আনবেন। আরও পড়তে পারেন: পরমাণু সক্ষমতা বাড়াতে আইন পাস করলো ইরান পরমাণু বিজ্ঞানী হত্যার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করলো ইরান ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী আততায়ীর হাতে নিহত ফখরিযাদে হত্যাকাণ্ড: ইরান কেন এক্ষুণি প্রতিশোধ নেবার কথা বলছে না? প্রেসিডেন্ট ওবামার শাসনামলে এ নিয়ে সমঝোতা হয়েছিল- এবং ইরান যদি "পরমাণু চুক্তির শর্তগুলো কঠোরভাবে মেনে চলে" তবে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে বলে জো বাইডেন জানান। মি. বাইডেন, ২০শে জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেবেন। তিনি গত বছর নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন যে "বিষয়টি অবশ্যই কঠিন" কিন্তু, "বিশ্বের ওই অংশে পারমাণবিক সক্ষমতা যেন শেষ হয়, সেটা নিশ্চিত করাই হবে আমাদের কাজ"। যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তিতে ফিরে এলে ইরান আবারও চুক্তিটি মেনে চলতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। মিস্টার বাইডেন যদি ২০১৭ সালের মতো পরিস্থিতিতে ফিরে আসেন, তবে আমরাও তাই করব," ডিসেম্বরে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি এমন বক্তব্য দিয়েছিলেন। ইরান ২০% পর্যন্ত বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কাজ শুরু করতে চায়, জাতিসংঘের পরমাণু নজরদারি সংস্থা বলছে - এটি এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক পরমাণু চুক্তির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য লঙ্ঘন। +text: মেয়েদের বিয়ে করে সন্তান নিতে উৎসাহিত করছে সরকার। তবে কিছু সৌভাগ্যবান চাকুরীজীবী কর্মক্ষেত্র থেকে তাদের সাত দিনের নিয়মিত ছুটির সঙ্গে বাড়তি আট দিনের ছুটি পাচ্ছেন। এই সুযোগ কেবল মাত্র তিরিশের কোঠার অবিবাহিত নারীদের জন্য। এর উদ্দেশ্য, তারা যেন তাদের জীবন সঙ্গী খুঁজে নিতে পারেন। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, চীনের পূর্বাঞ্চলের হাংঝুর দুটি কোম্পানি তাদের কর্মচারীদের এই অতিরিক্ত 'ডেটিং লিভ' বা প্রেম করার ছুটি দিচ্ছে। এর আগে খবর বেরিয়েছিল, ঐ শহরেই অবিবাহিত স্কুল শিক্ষিকাদেরও একই ধরনের 'লাভ লিভ' দেয়া হচ্ছিল। চীনে কোন নারীর বয়স তিরিশের কাছাকাছি চলে আসার পরও যদি তিনি অবিবাহিত থাকেন, তখন তাদের তাচ্ছিল্য করে ডাকা হয় 'শেং নু' অর্থাৎ 'বাতিল' কিংবা 'বাদপড়া মেয়ে' বলে। চীনে অনেক মেয়েই এখন যেহেতু তাদের কেরিয়ারের দিকেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন, তাই এরকম পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন অনেকেই। চীনা সমাজে এখনো মেয়েদের ওপর চাপ থাকে বিয়ে করার জন্য। অন্যদিকে চীনে যেভাবে কর্মক্ষম লোকের সংখ্যা কমছে এবং বয়োবৃদ্ধ মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, তা নিয়ে সরকার খুবই উদ্বিগ্ন। চীনের শিক্ষিত নারীরা এখন বিয়ে-সংসারের চেয়ে কেরিয়ার গড়তেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন 'লেফটওভার ওমেন' এবং 'বিট্রেয়িইং বিগ ব্রাদার: দ্য ফেমিনিস্ট এওয়েকেনিং ইন চায়না' নামে দুটি বই লিখেছেন লেটা হং ফিনচার। তিনি মনে করেন, ২৫ বছরের পরও অবিবাহিত নারীদের 'লেফটওভার ওমেন' বা বাতিল নারী বলে চিহ্ণিত করার এই ধারণাটির পেছনে একটা সুপরিকল্পিত সরকারী প্রচারণা কাজ করছে। "বিশেষ করে শিক্ষিত নারীদের বিয়ে করে সন্তান গ্রহণের দিকে ঠেলে দেয়ার জন্য এক সরকারী চেষ্টার অংশ এটি", বলছেন তিনি। কমছে জন্মহার ২০১৫ সালে চীন তার এক সন্তান নীতি পরিত্যাগ করে। এরপরও চীনে জন্মহার কমছে। ২০১৩ সালের পর থেকে প্রতি বছর বিয়ের হারও কমছে। ২০১৮ সালে চীনে দেড় কোটির বেশি শিশু জন্ম নেয়। আগের বছরের তুলনায় এটি ছিল বিশ লাখ কম। মিজ হং ফিনচার বলেন, চীনের জনসংখ্যায় নারী-পুরুষের অনুপাতেও বড় ধরনের ভারসাম্যহীনতা রয়েছে, কারণ সেখানে সরকারী নীতির কারণে পরিবারে ছেলে শিশু নেয়াকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। "চীনে আসলে নারীর স্বল্পতা আছে। সরকারী হিসেবেই চীনে এখন নারীর তুলনায় পুরুষের সংখ্যা তিন কোটি বেশি।" চীনের একাডেমি অব সোশ্যাল সায়েন্স বলছে, দেশটির জনসংখ্যা বর্তমানে যেখানে ১৪০ কোটি, তা আগামী ৫০ বছরে কমে দাঁড়াবে ১২০ কোটিতে। চীনে জন্মহার যেভাবে কমছে তা নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন এর পাশাপাশি যেহেতু জনসংখ্যায় প্রবীন মানুষের অনুপাত বাড়ছে, এটি চীনের সরকারী কোষাগার এবং সামাজিক কল্যাণ ব্যবস্থার ওপর বিপুল চাপ তৈরি করছে। কিন্তু জীবন সঙ্গী খুঁজে নেয়ার জন্য চীনে অবিবাহিত নারীদের যে অতিরিক্ত ছুটি দেয়া হচ্ছে, সেটা কতটা কাজ করবে তা প্রশ্ন সাপেক্ষ। হাংঝু সংচেন পারফর্মেন্স কোম্পানির মানবসম্পদ ম্যানেজার হুয়াং লেই বলেন, "অনেক নারী কর্মীর বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ খুব কম। তাই আমরা নারী কর্মীদের বাড়তি ছুটি দিতে চাই, যাতে তারা ছেলেদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং মেলামেশার জন্য আরও বেশি সময় দিতে পারে।" আরও পড়ুন: এক সন্তান নীতিতে কেমন ছিল চীনের জীবন অবশেষে 'এক সন্তান নীতি' বাতিল করছে চীন চীনের বিশাল জনসংখ্যা আরো বাড়তে শুরু করেছে তিনি জানান, এই 'ডেটিং লিভ' পেয়ে কর্মীরা বেশ খুশি। তবে এটি কতটা কাজ করবে সেটা নিয়ে তার মনেও প্রশ্ন আছে। তিনি বলেন, "এটি অনেক ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং নীতির একটি অংশ মাত্র।" "কিন্তু সমস্যা হলো মেয়েরা এখন বিয়ে করা বা সন্তান নেয়ার জন্য কোন ধরনে তাড়াহুড়োর মধ্যে নেই।" নতুন চন্দ্র বছর উদযাপন করতে চীনে কোটি কোটি মানুষ তাদের কাজ থেকে ছুটি নিয়ে পরিবারের কাছে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। +text: বাংলাদেশে বহুতল ভবনগুলো কতটা ঝুঁকিমুক্ত সে বিষয়ে কার্যকর কোন নজরদারির ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। ২০০৮ সালের ঢাকা মহানগর ইমারত বিধিমালা অনুযায়ী, কোনো ভবন নির্মাণ করা হলে সেটি ব্যবহার বা বসবাসের আগে ব্যবহার সনদ বা অকুপেন্সি সার্টিফিকেট নিতে হবে। এই সনদ না নিয়ে ভবন ব্যবহার করা যাবেনা। যদিও স্থপতি ইকবাল হাবীব বলছেন, রাজউক নিজেই এই বিধিমালা পাশের পর ৪০ হাজার ভবন নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে যেগুলোর মধ্যে মাত্র ১৬২টিতে এ সনদ আছে। অকুপেন্সি সার্টিফিকেট বা ব্যবহার সনদ আসলে কী? রাজউকের সদস্য (পরিকল্পনা) মেজর প্রকৌশলী শামসুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে বলছেন, একটি ভবন সঠিক ভাবে তৈরি হয়েছে কি-না, ভবনটি ব্যবহারের জন্য নিরাপদ কি-না, সেটি নিশ্চিত করার জন্যই অকুপেন্সি সার্টিফিকেট বা ব্যবহার সনদ। তিনি বলেন, এ সনদ থাকলে ফ্লাট রেজিস্ট্রেশন কিংবা হস্তান্তরের মতো কাজগুলো করা যাওয়ার কথা নয়। এমনকি ফ্লাট বা ভবনের বিপরীতে ব্যাংক ঋণ নিতে হলেও এ সনদ থাকতে হবে। তাহলে ৪০ হাজার ভবনের মধ্যে মাত্র ১৬২ টির এ সনদ কেনো - এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন এগুলো নিয়ে রাজউক এখন কাজ করছে। এসব বিষয়ে রাজউক আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে বলে আর কোনো মন্তব্য তিনি করতে রাজী হননি। অকুপেন্সি সার্টিফিকেট কিভাবে প্রচলন হলো? স্থপতি ইকবাল হাবিব বিবিসি বাংলাকে জানান, যে ২০০৮ সালে যখন ইমারত নির্মাণ বিধিমালা প্রণয়নের প্রস্তুতি নেয়া হয় তখন রাজউক দাবি করলো এতো ভবন দেখার মতো পর্যাপ্ত লোকবল তাদের তাদের নেই। "তখন সিদ্ধান্ত হলো যে প্রত্যেকটি ভবনের সাথে সংশ্লিষ্ট সুপারভাইজার, প্রকৌশলীসহ নির্মাণ পর্যায়ে যারা জড়িত তারা ভবনটিতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা আছে নিশ্চিত করে একটি সার্টিফিকেট দেবে।" এরপর তারা সেটি রাজউককে দিলে রাজউক তার পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করে ওই সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে ব্যবহার সনদ বা অকুপেন্সি সার্টিফিকেট দিবে বলে জানান মি. হাবিব। কিন্তু রাজউক তার সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেনি। তারা শুধু ব্যবহার সনদ দেয়ার ক্ষেত্রেই গাফলতি করেনি, এমনকি যে ১৬২ টি ভবন এই সনদ নিয়েছে সেগুলোর অনেকগুলোর সনদ নবায়ন নিশ্চিত করারও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, বলেন মিস্টার হাবিব। তিনি জানান, যে নবায়ন করার সময়েও রাজউকের দেখার কথা যে ভবনটিতে ফায়ার ফাইটিং থেকে শুরু করে সব নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে কি-না সেটি পর্যবেক্ষণ ও নিশ্চিত করা। কিন্তু এসব কিছুই তারা করেনি। অথচ বাংলাদেশ বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন অ্যাক্ট ১৯৫২ এর অধীনে বিধিমালার আধুনিকায়ন করে ২০০৮ সালে অগ্নি ও পার্কিংয়ের মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করার পর এই ব্যবহার সনদ নেয়াকে বাধ্য���ামূলক করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। ঢাকার সব বহুতল ভবন পরিদর্শন করা হবে: মন্ত্রী ঢাকার অবৈধ ভবনগুলো টিকে আছে কীভাবে ঢাকার সব বহুতল ভবন পরিদর্শন করা হবে: মন্ত্রী ঢাকায় বহু ভবন আছে যেগুলো নির্মাণের সময় নিয়ম মানা হয়নি কিভাবে নিতে হয় ব্যবহার সনদ? বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্লানার্সের সাধারণ সম্পাদক স্থপতি আদিল মোহাম্মদ খান বিবিসি বাংলাকে বলেন, ব্যবহার সনদের সুনির্দিষ্ট ফরম আছে। "ভবনটি কি আবাসিক নাকি কমার্শিয়াল হবে সেটি জানিয়ে ভূমি ব্যবহারের যে অনুমোদন নেয়া হয় তার ভিত্তিতে যে নকশা অনুমোদন হয়েছে ভবনটি ঠিক সেরকম তৈরি হয়েছে কি-না সেটি নিশ্চিত করতে হয়"। অর্থাৎ কেউ যখন কোনো ভবন নির্মাণ করবেন তা নির্ধারিত নকশা অনুযায়ী সিঁড়ি, ফায়ার ফাইটিং, ফায়ার এক্সিট, ব্যবহারের ধরণ আছে কি-না সেটি দেখার পরই অকুপেন্সি সার্টিফিকেট পাওয়ার কথা। স্থপতি ইকবাল হাবিব বলছেন, এগুলো না থাকলে ভবনটি ব্যবহারের কোনো অনুমোদনই পাওয়ার কথা নয়। তাছাড়া এগুলো থাকলেই কেবল ওই ভবনে গ্যাস বিদ্যুতের মতো পরিষেবা সেবা পাওয়ার কথা বলে জানান স্থপতি আদিল মোহাম্মদ খান। মিস্টার খান বলেন, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ যদি দেখতে পায় কোনো ভবন এই সনদ ছাড়াই চলছে তাহলে সেটি বন্ধ করে দেয়ার ক্ষমতা তাদের আছে। তবে রাজউকের কর্মকর্তারা ভবন পর্যবেক্ষণ চলার কথা জানিয়ে এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি। স্থপতি ইকবাল হাবিব বলছেন, রাজউকের বলার আর কিছু থাকতে পারেনা, তাদের এখন খুঁজে বের করা উচিত কারা সনদ ছাড়াই ভবন ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। বনানীর আগুনের ঘট্নার পর ঢাকার ভবনগুলো পর্যবেক্ষণের কথা বলছে রাজউক গ্যাস বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হয়েছিলো? জানা গেছে, প্রায় এক বছর আগে পরিষেবা সংযোগ অর্থাৎ গ্যাস বিদ্যুতের মতো সেবাগুলো নিতে ভবন ব্যবহার সনদ (অকুপেন্সি সার্টিফিকেট) বাধ্যতামূলক করে নির্দেশনাও জারি করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এরপর বিদ্যুৎ বিভাগের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয় সভায় এটি অনুসরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত মোতাবেক নতুন সংযোগ দেয়ার ক্ষেত্রে মূল নকশার সাথে সব ঠিক থাকলেই সংযোগ দেবে বিতরণ কোম্পানিগুলো। কিন্তু কার্যত শেষ পর্যন্ত এগুলো কিছুই আর মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়িত হয়নি। স্থপতি আদিল মোহাম্মদ খান বলছেন, "কারা ভবন করেছে- নির্মাতা, প্রকৌশলী, তত্ত্বাবধায়ক, স্থপতি- সবারই দায় আছে। এবং এদের কাছ থেকে সার্টিফিকেট নেয়ার দায়িত্ব ছিলো রাজউকের।" "কিন্তু তারা সেটি পালন করেনি আবার সনদ ছাড়াই ভবন ব্যবহারে তারা বাধা না দিয়ে বরং অনুমোদন দিয়েছে।" বাংলাদেশে গত দশ বছরে ৪০ হাজার ভবন অনুমোদন পেলেও অকুপেন্সি বা ব্যবহার সনদ আছে মাত্র ১৬২টির। কিন্তু এ সনদটি আসলে কী? +text: ক্যান্সার আক্রান্ত টেরি ফস্টার, ক্যান্সারের রোগী হবার কারণে তাঁকে চাকরি হারাতে হয়। এক হাজার নয় জন রোগীর ওপর এই জরিপটি চালায় সংস্থাটি। এরা সবাই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে কর্মস্থলে ফিরেছিলেন। এই জরিপ এটাও প্রমাণ করে যে ক্যান্সার আক্রান্তরা পুরোপুরি সুস্থ হবার আগেই কাজে ফিরেছেন। অনেকে বলছেন যে চিকিৎসার কারণে বারবার অফিস থেকে ছুটি নিতে হয় বলে তারা অপরাধবোধে ভুগেন। ম্যাকমিলানের কর্মকর্তা লিজ এগান বলছেন "রোগীদের বক্তব্যে এটাই প্রমাণ করে যে বেশিরভাগ অফিস তার কর্মকর্তাদের এক্ষেত্রে সঠিকভাবে পাশে দাঁড়াচ্ছেন না"। সংস্থাটি বলছে যুক্তরাজ্যের যেসব নাগরিক ক্যান্সারে ভুগেন তারা তাদের কর্মস্থল থেকে ভালো সহায়তা পাবার অধিকার রাখেন, এমনকি ওই রোগীদের জন্য বিশেষ কর্মকর্তাও নিয়োগ দেয়া উচিত প্রতিষ্ঠানগুলোর। কিন্তু দু:খের বিষয় খুব কম সংখ্যক প্রতিষ্ঠানই সত্যিকার সাহায্যের মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসছে। সংস্থাটির জরিপে দেখা যাচ্ছে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের ১৪ শতাংশ চাকরি ছেড়ে দিচ্ছে বা তাদের চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। ক্যান্সার আক্রান্ত কোষ ৫৮ বছর বয়সী টেরি ফস্টার বলেছেন ক্যান্সারের রোগী হওয়ার কারণে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ২০১০ সালে তার শরীরে এই রোগটির উপস্থিতি ধরা পড়ে এবং তাকে নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছিল ১৯ দিন। এক সময় ধারণা করা হয়েছিল মি: ফস্টার হয়তো আর বাঁচবেন না। কিন্তু তিনি আশ্চর্যভাবে বেঁচে যান এবং তাঁর ছোট্ট শিশুটিকে দেখে নতুনভাবে বাঁচার তাগিদ অনুভব করেন। টেরি ফস্টার এটাও আশা করছিলেন যে খুব শিগগিরই তিনি কাজে ফিরতে পারবেন। কিন্তু যখন তিনি তার ম্যানেজারের সাথে দেখা করতে যান তার ম্যানেজার খুব রূঢ়ভাবে তাকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়। তবে মি: ফস্টার সেই প্রতিষ্ঠানকে অন্যায্যভাবে তাকে বরখাস্ত করার জন্য আদালতের কাঠগ���়ায় দাড় করান এবং ৬২ হাজার পাউন্ডেরও বেশি অর্থ জিতে নেন। ম্যাকমিলান ক্যান্সার সাপোর্টের মিস এগান বলছেন ক্যান্সার আক্রান্ত অনেকেই জানেন না যে 'ইকুয়েরিটি অ্যাক্ট ২০১০' অনুযায়ী তাদেরও অধিকার আছে। যেহেতু কর্মস্থলে অনেকেই বৈষম্যের শিকার হন এবং চাকরি হারানোর ভয়ও থাকে তাই অনেক সময়ও এমনও দেখা যায় ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েও সেটা সহকর্মী বা প্রতিষ্ঠান কাউকেই জানান না অনেক রোগী। দাতব্য সংস্থা ম্যাকমিলান ক্যান্সার সাপোর্টের এক গবেষণায় দেখা গেছে ক্যান্সারে আক্রান্তদের প্রায় পাঁচ শতাংশ মানুষ (বা ১৮ শতাংশ) চিকিৎসা নিয়ে কর্মস্থলে ফিরলেও তারা তাদের সহকর্মী বা বসের বৈষম্যের শিকার হন। +text: বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত ৬৮% রোগীকেই ঘরে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে তিনি আরো জানান, যে ৩২% রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের অনেকেই ঘরে বসেই চিকিৎসা নিতে পারেন এবং তাদের হাসপাতালে আসার খুব একটা প্রয়োজনও নেই। কিন্তু ঘরে বসে যারা করোনাভাইরাসের চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাদের আসলে কীভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে? যেভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে ঘরে থাকা রোগীদের ঢাকার একজন চিকিৎসক - যিনি গত সোমবার জানতে পারেন যে তার দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে - প্রায় পাঁচদিন ধরে ঘরে কোয়ারেন্টিনে থেকেই কোভিড-১৯ এর চিকিৎসা নিচ্ছেন। শুক্রবার করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেয়ার পর রবিবার তার নমুনা পরীক্ষা করা হয় এবং উপসর্গ মৃদু হওয়ায় চিকিৎসকদের সাথে পরামর্শের ভিত্তিতে তিনি ঘরে চিকিৎসা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। "কোয়ারেন্টিনের শুরু থেকে আমি আলাদা একটি রুমে আছি, যেই রুমের সাথে বাথরুম আছে। আমার খাবার রুমের বাইরে রেখে যাওয়া হয় এবং আমি এখন পর্যন্ত ঐ ঘর থেকে বের হইনি।" কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? বিশ্ব মহামারি শেষ হতে কতদিন লাগবে? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় করোনাভাইরাস নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন করোনাভাইরাস শনাক্তে নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। (ফাইল ছবি) শুরুতে জ্বর, কাশি, শরীরে ব্যথা হওয়ার মত কিছু উপসর্গ দেখা ���িয়েছিল তার, তবে কয়েকদিন ঘরে চিকিৎসা নেয়ার পর তার উপসর্গ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক মাত্রায় নেমেছে বলে জানান তিনি। চিকিৎসকদের সাথে তিনি নিয়মিত ভিত্তিতে যোগাযোগ রাখছেন। তাকে নির্দিষ্ট কয়েকটি ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি চিকিৎসকরা খাদ্যাভ্যাস ও স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত উপদেশ দিয়েছেন বলে জানান ঐ নারী। "পানীয় জাত খাবার নিয়মিত খাওয়া, প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি - যেমন লেবু, কমলালেবু - খাওয়া ও বেশিমাত্রায় প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার উপদেশ দেয়া হয়েছে আমাকে।" "পানি, স্যালাইনের মত খাবার বারবার খাওয়ার পেছনে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়া নিয়মিত গরম খাবার বা গরম পানীয় খাচ্ছি। পাশাপাশি নাকেমুখে পানির বাষ্প নেয়াও অব্যাহত রেখেছি।" তিনি জানান, নিয়মিত চিকিৎসকদের সাথে যোগাযোগের সময় তার উন্নতি ও উপসর্গের মাত্রা যাচাই করে চিকিৎসকরা তার পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে মন্তব্য জানান। চিকিৎসকরা কীভাবে রোগীর সেবা দিচ্ছেন? ঘরে কোয়ারেন্টিন অবস্থায় থাকার ক্ষেত্রে এই নারী বা তার পরিবারের সদস্যরা সামাজিকভাবে কোনধরনের বিরূপ মনোভাবের শিকার না হলেও তার পরিচিত কয়েকজন আক্রান্ত রোগী নানা ধরণের জটিলতার মধ্যে পড়েছেন বলে জানান। আর বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত অনেকেই এই ধরণের সমস্যার মধ্যে পড়ছেন বলে মন্তব্য করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টার্নাল মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাজমুল হাসান, যিনি বাড়িতে চিকিৎসাধীন করোনাভাইরাস রোগীদের খোঁজখবর রাখছেন। পরিবার বা বাড়িতে ঘরে কোয়ারেন্টিন করার পরিস্থিতি না থাকা, হল বা মেসে থাকায় সেবাযত্ন করার মানুষ না থাকায় এবং অনেকসময় পাড়া প্রতিবেশী বা বাড়িওয়ালার আপত্তিতেও মানুষের ঘরে বসে চিকিৎসার কাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন নাজমুল হাসান। "অনেকেই রয়েছেন যাদের অল্প উপসর্গ রয়েছে ও বাসায় চিকিৎসা করা সম্ভব, কিন্তু নানা সমস্যার কারণে তাদের ঘরে চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না - এই ধরণের রোগীদের ক্ষেত্রে বেশ সমস্যা হচ্ছে আমাদের।" তবে বাংলাদেশের অধিকাংশ কোভিড-১৯ রোগীকে এখন ঘরে রেখে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হলেও যাদের ডায়াবেটিস, হৃদরোগ বা কিডনির সমস্যা রয়েছে, তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে জানান নাজমুল হাসান। ডাক্তার হাসান জানান, ঘরে যারা চিকিৎসা নেন, তাদের ক্ষেত্রে মূলত কয়েকটি বিষয়ে নিয়মিত খোঁজখবর রাখা হয়। "কাশি অনেক বেড়ে যাচ্ছে কিনা, শ্বাসকষ্ট হঠাৎ বেড়ে যাচ্ছে কিনা, জ্বরের তীব্রতা বেড়ে অজ্ঞান ভাব হচ্ছে কিনা এবং শারীরিক অস্বস্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে কিনা - এ বিষয়গুলো নিয়মিত খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।" বাংলাদেশে শুক্রবার পর্যন্ত যে ১,৮৭৮ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, তাদের ৬৮ ভাগই ঘরে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে জানান আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। +text: নীরবতায় পরমানন্দ পান সারা মেইটল্যান্ড। আবার কিছু মানুষের কাছে এই নিঃসঙ্গতাই হল আনন্দের উৎস। বিবিসির শবনম গ্রেওয়াল এমনই স্বেচ্ছায় বনবাসের জীবন বেছে নেয়া দু'জনের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদের মধ্যে একজন হলেন ক্রিস্টোফার নাইট। ১৯৮৬ সালে জন্ম নেয়া ওই ব্যক্তি ২০ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের মেইন রাজ্যের একটি বনে বসবাস শুরু করেন। তিনি নিজের গাড়ি বাড়ি সব ছেড়ে শুধুমাত্র জরুরি প্রয়োজনের কিছু জিনিষপত্র নিয়ে শুরু করেন তার অরণ্যবাস। গত ২৭ বছরে একবারের জন্যও তিনি সেই অরণ্য থেকে বেরিয়ে আসেননি। ইচ্ছাকৃতভাবে হারিয়ে যাওয়ার পরে, মিস্টার নাইট শেষ পর্যন্ত নিজের বাড়ির জন্য কাঙ্ক্ষিত জায়গাটি খুঁজে পেয়েছিলেন। নর্থ পণ্ড নামের একটি হ্রদের চারপাশে ঘন জঙ্গলে ঘেরা একটি অংশ। তার মাঝে একটি ফাঁকা জায়গায় তিনি তার থাকার ঘরটি তৈরি করেন। গাছের মাঝে কিছু তার ঝুলিয়ে তার মধ্যে নিজের নাইলনের তাঁবুটি স্থাপন করে তিনি শুরু করেন তার স্থায়ী বনবাস। ২০ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের মেইন রাজ্যের একটি বনে বসবাস শুরু করেন ক্রিস্টোফার নাইট । তার অবস্থান সম্পূর্ণ লুকানো থাকলেও মাত্র কয়েক মিনিট হাঁটার পথেই ছিল কয়েকশ সামার কেবিন। নাইট মূলত সেসব কেবিন এবং কমিউনিটি সেন্টারের জিনিসপত্র চুরি করে টিকে ছিলেন। সেখান থেকে তিনি কেবল তার প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি নিতেন - যেমন খাদ্য, রান্নার জন্য জ্বালানী, কাপড়, বুট, টর্চের জন্য ব্যাটারি এবং প্রচুর বই। তবে বছরে ১০০০ টিরও বেশি চুরির ঘটনায় কেবিন মালিকদের মধ্যে প্রচুর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়। অবশেষে পুলিশ একটি ফাঁদ পেতে হাতেনাতে ধরে নাইটকে। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ওই কারাগারে নাইটের সঙ্গে কথা হয় লেখক মাইক ফিনকেলের। তিনি ��খন "দ্য স্ট্রেঞ্জার ইন দ্য উডস: দ্য এক্সট্রা অর্ডিনারি স্টোরি অফ দ্য লাস্ট ট্রু হার্মিট" বইটি লিখেছিলেন। আরও পড়তে পারেন: একাকীত্ব কাটিয়ে ওঠার ৯টি উপায় একাকীত্ব কোন্ বয়সের মানুষের জন্য হুমকি? মেয়েরা নিঃসঙ্গতার শিকার হয় বেশি: গবেষণা তিনি নাইটের কাছে জানতে চান যে "কেন তিনি দুনিয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে পুরোপুরি একা বাঁচতে চলে গেলেন?" ক্রিস নাইট জানান যে তিনি অন্যান্য মানুষের আশেপাশে থাকতে খুব অস্বস্তি বোধ করেন। তার একাকী হওয়া চেষ্টা অনেকটা মহাকর্ষীয় শক্তির মতো কাজ করে, যেখানে তার সমস্ত শরীর বলতে চায় যে তিনি কেবল নিজের সাথেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।" তার এই চেষ্টা এতটাই প্রবল ছিল যে তিনি কোন ব্যক্তির সাথে কথা না বলে প্রায় তিন দশক কাটিয়ে দিতে পেরেছেন। তবে এরমধ্যে তিনি একজন ব্যক্তির সাথে কথা বলেছিলেন - এক হাইকার তার সামনে হোঁচট খেয়ে পড়ায় তিনি তাকে "হাই" বলেছিলেন। নর্থ পন্ডে নাইটের তৈরি ক্যাম্প। মেইনের বিরূপ আবহাওয়ার সঙ্গেও নিজেকে মানিয়ে নিয়েছিলেন নাইট। তাপমাত্রা মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গেলেও তিনি আগুন জ্বালাননি না। তার যুক্তি হল আগুনের ধোঁয়া অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে। দিনের পর দিন তাহলে কী করে সময় কাটিয়েছেন নাইট? ফিনকেলের এমন প্রশ্নের জবাবে নাইট বলেন যে, তিনি সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিতেন। এবং রাতে যখন শীত বাড়তে থাকে, বিশেষ করে রাত তিনটার দিকে তিনি অ্যালার্ম দিয়ে রাখতেন। সে সময় তিনি ঘুম থেকে উঠে সকাল পর্যন্ত হাঁটাহাঁটি করতেন, যেন নিজেকে উষ্ণ রাখা যায়। কিছুক্ষণ তিনি কিছু বই পড়তেন, ক্রসওয়ার্ড বা শব্দ তৈরির খেলা খেলতেন ... তবে শুধু এসব করেই যে সময় কাটাতেন, ঠিক তা না। তিনি মূলত যা করতেন তা হ'ল 'কিছুই না'" নাইটের এই "কিছুই না" বিষয়টিকে ফিনকেল ব্যাখ্যা করেছেন অনেকটা এভাবে- "প্রথমত নাইট ২৭ বছরে মধ্যে এক মুহূর্তের জন্যও একঘেয়েমি বোধ করেননি। তিনি কখনও নিঃসঙ্গ বোধ করেননি। বরং তিনি বিশ্বের সমস্ত কিছুর সাথে সম্পূর্ণ এবং নিবিড়ভাবে যুক্ত ছিলেন। যার যোগাযোগ ছিল শুধুমাত্র প্রকৃতির সাথে। এই কিছুই না সময়ে এই যোগাযোগটি স্থাপন হয়েছে।" ক্রিস্টোফার নাইট তার চুরির জন্য সাত মাস জেল খেটেছেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি লেখক ফিনকেল ছাড়া আর কারো সঙ্গেই কথা বলেননি। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: ভারতে তি��� তালাক দিলে তিন বছরের কারাদণ্ড ‘থানায় থাকা ছেলে দু চোখ উপড়ানো অবস্থায় হাসপাতালে’ এডিস মশা সম্পর্কে যেসব তথ্য জেনে রাখা ভাল কলকাতা যেভাবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সফল নর্থ পন্ড, মেইন। তারপর এই বনবাস নিয়ে গুগলে সার্চ করতে গিয়ে আরেকজন স্বেচ্ছা বনবাসীর খোঁজ পান ফিনকেল। আর তিনি হলেন সারা মেইটল্যান্ড। স্কটল্যান্ডে নিজের তৈরি একটি সুন্দর ছিমছাম কুটিরে একা থাকেন তিনি। তার সামনের দরজা থেকে মাইলের পর মাইল বিস্তৃত ভূমি চোখে পড়ে। হারমিট বা তার মতো বনবাসীদের নিয়ে মানুষের অনেক ভ্রান্ত ধারণা নিয়ে কথা বলেন মিজ মেইটল্যান্ড। প্রথমত অনেকেই ভাবেন হারমিটরা সেলফিশ বা স্বার্থপর হয়। যা নিয়ে মিজ মেইটল্যান্ড রসিকতা করতেও ছাড়েননা। তবে একাকী নীরবে কেন এতো দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করতে চান? এর উত্তরে মিজ মেইটল্যান্ড বলেন, "নীরবতা এমন একটি জায়গা যেখানে আমি পরমানন্দ পাই এবং এটি কেবল একটি কল্পিত অনুভূতি।" "আমি কেবল এটিকে নিস্তব্ধতায় পেয়েছি এবং আমি জানি বেশিরভাগ লোকেরা এটি কেবল নীরবতার মধ্যেই পান। "- জানান তিনি। যারা দীর্ঘ সময় একা একা কাটান তাদের অভিজ্ঞতার মধ্যে রয়েছে, তারা নিজেদের ব্যাপারে অতি সচেতনতা বোধ হারিয়ে ফেলেন এবং পুরোপুরি নিজের মতো হয়ে ওঠেন, সেখানে ভদ্রতার চর্চা করতে হয়না বা অন্যকে অন্যকে খুশি করার চেষ্টাও থাকেনা। এর অর্থ আপনি চাইলেই নাক খোঁচাতে পারবেন। জোরে গান করতে পারবেন আবার পোশাক পরতেও ভুলে যেতে পারেন। এছাড়া যেকোনো খাবারের স্বাদ স্বাভাবিক সময়ের চাইতে একাকীত্বের জীবনে অনেক বেশি সুস্বাদু লাগে বলেও তিনি জানান। নাইট মূলত পাশের সামার কেবিন এবং কমিউনিটি সেন্টারের জিনিসপত্র চুরি করে টিকে ছিলেন। গোসল করার মতো স্বাভাবিক কার্যকলাপেও অনেক আনন্দ পাওয়া যায়। আর গরম পানিতে গোসলকে তো মনেহবে রীতিমত বিলাসিতা। তবে এই নিস্তব্ধতার প্রভাব একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম বলে মনে করেন মিজ মেইটল্যান্ড। তিনি জানান যে, প্রিয়জন মারা যাওয়ার পরে, বা সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পরে মানুষ প্রায়শই প্রথমবারের মতো নীরবতার মুখোমুখি হয়। অনেকের ওপর সেই নিঃসঙ্গতার বিরূপ প্রভাব পড়ে। এ কারণে তিনি মনে করেন যে মানুষকে যদি শৈশব থেকে একাকীত্ব বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসাবে দেখায় বা একাকীত্বের অভিজ্ঞতাকে আনন্দদায়ক হিসেবে শেখায়, তাহলে এমনটা হওয়ার আশঙ্কা থাকবেনা। "আমার মতে শাস্তি হিসাবে কখনও 'নিজের ঘরে যাও' এমন কথা বলা ঠিক হবেনা। বরং একাকী থাকার বিষয়টি পুরস্কার হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন।"- বলেন মিজ মেইটল্যান্ড। সারা মেইটল্যান্ড। ক্রিস্টোফার নাইটও মনে করেন নীরবতা ও নিঃসঙ্গতা হল পুরস্কারের মতো। তিনি চান তার সারা জীবন বনের এই ছোট্ট কুটিরে কাটিয়ে দিতে এবং এখানকার গাছের সারিতে সব ধরণের জাগতিক মায়া পেছনে ফেলে মারা যেতে। ফেসবুক এবং সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে এ ধরণের ব্যক্তিদের আক্ষরিক অর্থে চাওয়ার কিছু থাকেনা।," মাইক ফিনকেল বলেছেন। তার কোনও ক্যামেরা ছিল না। তিনি কখনও পত্রিকা রাখেন নি। কিছুই ছিল না। তিনি পুরোপুরি অজানা থাকতে চেয়েছিলেন, এবং সাফল্যের কাছাকাছি এসেছিলেন।" অনেক মানুষ আছেন যারা একা থাকতে পছন্দ করেন না। তারা একাকী বোধ করেন। +text: দূরদর্শন বাদে ভারতের সব নিউজ চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে নেপালে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে নেপালের কেবল অপারেটররা তাদের দেশে ভারতের ওই সব নিউজ চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। নেপালের কেবল অপারেটররা ভারতীয় নিউজ চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিজেরাই নিয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে বিবিসি নেপালি সার্ভিস। কেবল অপারেটরদের বরাত দিয়ে ঐ খবরে বলা হয়, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলির সঙ্গে নেপালে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত হউ ইয়ানচির বৈঠক সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশ করার পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেবল অপারেটররা। বিভিন্ন সূত্রের উল্লেখ করে বিবিসি নেপালি জানায় যে, নেপাল সম্পর্কে আপত্তিকর খবর প্রচার করায় দিল্লিতে নেপালের দূতাবাস আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত সরকারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে আইনি এবং কূটনৈতিকভাবে পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে বৃহস্পতিবার মন্তব্য করেছিলেন নেপাল সরকারের মুখপাত্র ও যোগাযোগমন্ত্রী যুবরাজ খাতিওয়াড়া। আরো পড়তে পারেন: ভারতের দাবি করা ভূখণ্ড নিজেদের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করলো নেপাল ভারত-নেপালের কালাপানি বিরোধ কি চীনের উস্কানিতেই বিতর্কিত ভূখণ্ড মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করে নেপালের সংবিধান সংশোধন হিমালয়ে নতুন রাস্তাকে কেন্দ্র করে ভারত ও নেপালের মধ্যে সংঘাত নেপালের পার্লামেন্টে নতুন মানচিত্র তৈরির প্রস্তাবে ভোট দিচ্ছেন এমপিরা যেসব কারণে সম্প্রচার বন্ধ করার সিদ্ধান্ত ভার�� নিজেদের বলে দাবি করে, এমন বিতর্কিত ভূখণ্ড কালাপানি আর লিপুলেখকে নেপাল নিজেদের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করার পর দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়। আর এরপরই ভারতের সংবাদ মাধ্যমগুলো আপত্তিকর সংবাদ প্রকাশ করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন নেপালের কেবল অপারেটররা। ডিটিএইচ সেবাদানকারী দিশোম-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুদীপ আচার্য মন্তব্য করেন, নেপালের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে খবর প্রচার করার বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ হলো অপারেটদের ভারতীয় চ্যানেল বর্জন। মেরো টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকাশ ঘিমিরে জানান, গত দুই-তিন মাস ধরে গ্রাহকদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর তারা ভারতীয় চ্যানেল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মি. ঘিমিরে এ বিষয়ে আরও মন্তব্য করেছেন যে নেপালের চ্যানেল যদি ভারত সম্পর্কে 'অসহ্য খবর' প্রচার করে, তাহলে ভারতেরও উচিত নেপালের চ্যানেল নিষিদ্ধ করে দেয়া। তবে আপাতত অনির্দিষ্টকালের জন্য সম্প্রচার বন্ধ করলেও এ বিষয়ে সরকারের সাথে আলোচনার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়ার ব্যাপারে আশাবাদ প্রকাশ করেন নেপালের কেবল অপারেটররা। ম্যাক্স টিভির চেয়ারম্যান দিনেশ সুবেদি জানান, শুক্রবার কেবল অপারেটরদের নিজেদের মধ্যে বৈঠকে এই বিষয় নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। কাঠমান্ডুতে ভারতবিরোধী একটি বিক্ষোভ - ভারত বিরোধিতা দিনে দিনে বাড়ছে নেপালে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ নেপালের ভারতের টিভি চ্যানেলের 'আপত্তিজনক' খবর প্রচারের প্রেক্ষিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেছে দিল্লিতে নেপালি দূতাবাস। দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা জানান, "আমরা আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক, এই দুই ভাবেই এই বিষয়টি কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করেছি।" বিবিসি'কে ঐ কর্মকর্তা বলেন, "ভারত সরকারও বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে এবং তারাও মনে করে যে প্রচার করা খবর আপত্তিকর।" ওদিকে নেপালের কেবল অপারেটররা নিজে থেকে ভারতীয় চ্যানেল সম্প্রচার না করার সিদ্ধান্ত নেয়ার পেছনে নেপাল সরকারের মদদ আছে বলে মনে করে বাকস্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা নেপালের অ্যাক্টিভিস্টরা। ভারত-নেপালের বিরোধের কেন্দ্রে থাকা ভূখণ্ডগুলোর মধ্যে কালাপানি, লিপুলেখ এবং সুস্তা অন্যতম ভারত-নেপাল সাম্প্রতিক বিরোধ ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ৮ই মে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চীনের তিব্বত সীমান্তের কাছে লিপুলেখের সাথে সংযুক্তকারী ৮০ কিলোমিটার লম্বা একটি রাস্তা উদ্বোধন করেন। রাস্তাটি উদ্বোধনের সাথে সাথে নেপাল প্রতিবাদ জানায়, যে এলাকার মধ্য দিয়ে এই রাস্তা নেওয়া হয়েছে তার অনেকটাই তাদের। কোনো কথাবার্তা ছাড়াই এই জায়গার ভেতর দিয়ে ভারতের এই রাস্তা তৈরি তারা কখনই মানবে না। নেপাল একই সাথে ঐ অঞ্চলের কাছে তাদের পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করে, আর কাঠমান্ডুতে ভারতীয় দূতকে ডেকে প্রতিবাদ জানায়। তারপর ভারতের কাছ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে গত শনিবার নেপালের সংসদের নিম্নকক্ষ দেশের নতুন একটি মানচিত্র অনুমোদন করে, যেখানে কালাপানি নামে পরিচিত প্রায় চারশো বর্গকিলোমিটারের ঐ পাহাড়ি এলাকাটিকে তাদের এলাকা বলে দেখানো হয়। এক সময়ে ঐতিহাসিকভাবে ভারতের অনুগত হিসেবে পরিচিত ক্ষুদ্র এই প্রতিবেশীর এসব প্রতিক্রিয়ায় ভারতে একাধারে বিস্ময় এবং উদ্বেগ তৈরি হয়। নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলি সম্পর্কে 'আপত্তিকর ও অগ্রহনযোগ্য' সংবাদ প্রচার করায় একটি ছাড়া ভারতের আর কোন নিউজ চ্যানেল সম্প্রচার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নেপালের কেবল অপারেটররা। +text: পাঞ্জাবে ৩০ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েছে। কারণ সন্দেহ করা হচ্ছে, তাদের সবার দেহে এই রোগ সংক্রমিত হয়েছে মাত্র একজনের কাছ থেকে। সত্তর-বছর বয়সী বলদেব সিং সম্প্রতি করোনাভাইরাসে মারা গেছেন। আর এই ঘটনা প্রকাশিত হয়েছে তার মৃত্যুর পর। এই ব্যক্তি একজন শিখ ধর্মপ্রচারক। সম্প্রতি তিনি ইতালি এবং জার্মানি সফর শেষে দেশে ফেরেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর জন্য স্বেচ্ছায় জন-বিচ্ছিন্ন থাকার যেসব উপদেশ রয়েছে তিনি তার কোনটাই মেনে চলেন নি বলে কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানান। ভারতে মোট করোনাভাইরাস রোগীর নিশ্চিত সংখ্যা ৬৪০। এর মধ্যে ৩০ জন রোগী পাঞ্জাবের। তবে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ভারতে করোনাভাইরাস রোগী আসল সংখ্যা অনেক বেশি হবে। ভারতে রোগীর পরীক্ষার হারও অনেক কম। তবে সম্প্রতি পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। একশো ত্রিশ কোটি জনসংখ্যার দেশ ভারতে করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তার ফল হবে বিপর্যয়কর। তার মৃত্যুর কিছুদিন আগে শিখ ধর্মের একটি উৎসব হোলা মহল্লা উপলক্ষে বলদেব সিং বড় ধরনের এক জনসমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন। ছয়দিনব্যাপ��� ঐ উৎসবে প্রতিদিন প্রায় ১০,০০০ মানুষ যোগ দিয়েছিলেন। মি. সিংয়ের মৃত্যুর পর তার ১৯জন আত্মীয়র দেহে পরীক্ষায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন করোনাভাইরাস আক্রান্ত করোনাভাইরাসের বিস্তার বেড়েছে, তাই নমুনা সংগ্রহের আওতা বাড়ছে বাংলাদেশে আরো ৪ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত বাংলাদেশে, দু'জন চিকিৎসক বিশ্বে সবচেয়ে বেশি করোনাভাইরাস আক্রান্ত এখন যুক্তরাষ্ট্রে অমৃতসরের কেন্দ্রস্থরে পুলিশ কমান্ডোেদর প্রহরা। “এপর্যন্ত আমরা ৫৫০ ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে পেরেছি যারা সরাসরিভাবে তার সংস্পর্শে এসেছিল। কিন্তু এই সংখ্যা এখন বাড়ছে,” পাঞ্জাবের একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলছেন, “ তিনি যেখানে থাকতেন তার আশেপাশে ১৫টি গ্রাম আমরা এপর্যন্ত সিল করে দিয়েছি।" পাশের জেলার পাঁচটি গ্রামও লকডাউন করা হয়েছে। তবে ভারতে এত বেশি সংখ্যায় মানুষকে কোয়ারানটাইনে পাঠানোর ঘটনা এটাই প্রথম না। রাজস্থানের ভিলওয়ারা শহরের একদল ডাক্তার যারা নিজেরাই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের মাধ্যমে বহু লোকের মধ্যে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঐ শহরের কাছের গ্রামগুলিতে ৭,০০০ মানুষ এখন কোয়ারানটাইনে রয়েছেন। ভারতে এখন ২১ দিনব্যাপী লকডাউন চলছে। কিন্তু খাবার এবং ওষুধ কেনার জন্য মানুষের ঘরের বাইরে যাওয়ার অনুমতি রয়েছে। নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন করোনাভাইরাসের উৎপত্তি কোথায়, কেন এতো প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরিতে অগ্রগতি কতদূর? ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ পাঞ্জাবের কর্তৃপক্ষ সেখানকার ২০টি গ্রামের ৪০,০০০ বাসিন্দাকে কোয়ারানটাইনে আটক করেছে। +text: ভারতে তৃতীয় লিঙ্গের কবিদের প্রথম সম্মেলনে কবিতা পড়ছেন একজন কবি। ভারতের সাহিত্য আকাদেমি কলকাতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই তৃতীয় লিঙ্গের কবিদের নিয়ে আয়োজন করেছিল এক কবি সম্মেলনের। তাঁদের কবিতায় উঠে এসেছে রূপান্তরকামী হওয়ার কারণে অপমান, জীবন যন্ত্রণা আর লড়াইয়ের কথা। সেদেশের প্রথম সরকারী উদ্যোগে তৃতীয় লিঙ্গের কবিদের উৎসব ছিল এটি। পরিবারে সন্তানের জন্ম হওয়ার পরে অনেকেই হয়তো শুনেছেন সাধারণভাবে যেগুলোকে হিজড়াদের গান বলা হয়ে থাকে, সেই গান। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এঁরা গাইছিলেন সম্পূর্ণ অন্য এক পরিসরে - একটা কবি সম্মেলনে। ওটা এঁদেরই সম্মেলন ছিল - তৃতীয় লিঙ্গের কবিদের কবিতাপাঠের আসর। তাঁদের কবিতায় উঠে এসেছে রূপান্তরকামী হওয়ার কারণে অপমান, জীবন যন্ত্রণা আর লড়াইয়ের কথা কবিদের মধ্যে কেউ কলকাতার কলেজে অধ্যাপনা করেন, কেউ গ্রামের স্কুলের মাস্টারমশাই। যেমন মেদিনীপুরের একটি গ্রামের স্কুলের শিক্ষক প্রস্ফুটিতা সুগন্ধা এরকমই একজন রূপান্তরকামী কবি। "যখন ঠোঁটের ওপর কচি গোঁফের রেখা হাফ প্যান্ট ছেড়ে ফুলপ্যান্ট ধরা, ক্লাস নাইনে স্যার একদিন ক্লাসে এসে বললেন ফুটবল ম্যাচ হবে, কে কে খেলবি! অনির্বাণ বলল, কী রে আকাশ খেলবি নাকি! স্যার সবার সামনে হেসে বললেন, ও তো মাইচা, ও কী খেলবে সবাই হেসে উঠল জোরে, স্যারও হাসলেন জোরে। আমাদের স্কুলের গেটের সামনে যে শিউলি গাছটা ছিল সেদিন সে তার সব ফুল ঝরিয়েছিল" এই সম্মেলনের আয়োজন করেছিল ভারতের সাহিত্য আকাদেমি। কবিদের মধ্যে কেউ কলকাতার কলেজে অধ্যাপনা করেন, কেউ গ্রামের স্কুলের মাস্টারমশাই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছিলেন মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ভারতের প্রথম রূপান্তরী নারী, যিনি একটি কলেজের অধ্যক্ষা হয়েছেন। কবিতা শোনাচ্ছিলেন মানবীও। "বর্ধমানের ভাষায় মেয়ে ন্যাংড়া ছেলে বরিশালে মাইগ্যাপর ছেলে হয়েও ছেলে নয়, মেয়েও নয় কেমন একটা মাঝামাঝি। কোনও একটা দিক নে - হয় ছেলে নয় মেয়ে। এভাবে রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকলে গাড়ি চাপা পড়বি যে।" বাংলা ভাষার খ্যাতনামা কবি ও পশ্চিমবঙ্গ কবিতা আকাদেমির সভাপতি সুবোধ সরকার বলছিলেন ভারতে শুধুমাত্র তৃতীয় লিঙ্গের কবিদের নিয়ে সরকারী উদ্যোগে কবি সম্মেলন এই প্রথম হল। "সরকারী উদ্যোগে তৃতীয় লিঙ্গের কবিদের নিয়ে এরকম অনুষ্ঠান আগে হয় নি। সে দিক থেকে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘটনাচক্রে কলকাতা বা তার আশেপাশে পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলোতে এরকম বেশ কয়েকজন রূপান্তরী কবি রয়েছেন, যারা বেশ ভাল লিখছেন। তাঁদের জীবনের আবেগ, কষ্ট, ব্যথা বেদনা এগুলো উঠে আসছে লেখায়। এগুলোকে এক্সপ্লোর করা দরকার," বলছিলেন মি. সরকার। যতজন কবিতা পড়লেন, তাঁদের সবার লেখায়উঠে এসেছে নিজেদের জীবন যন্ত্রণার কথা। যতজন কবিতা পড়লেন, তাঁদের সবার লেখায় বারে বারেই উঠে এসেছে নিজেদের জীব��� যন্ত্রণার কথা - আত্মীয় পরিজন থেকে শুরু করে শিক্ষক বা গোটা সমাজের কাছেই কীভাবে ব্যঙ্গের পাত্র হয়ে উঠতে হয়েছে শুধুমাত্র তাদের হাবভাব অন্যরকম বলে.. সেটাই নিজেদের কলমে তুলে ধরেছেন এই কবিরা। কলকাতার একটি কলেজের অধ্যাপক, ও রূপান্তরকামী কবি দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য বলছিলেন, "আমরা ভীষণভাবে অভ্যস্ত এধরণের জীবন যন্ত্রণা, এরকম অপমানগুলোতে। যেজন্য লিখতে বসলেই এই ভাবনাটাই সবার আগে মাথায় আসে। যদিও অন্য বহু বিষয় রয়েছে যেগুলো নিয়ে লিখি বা লিখতে ইচ্ছা করে। কিন্তু এটা যেহেতু ট্র্যান্স জেন্ডার কবিদের সম্মেলন, তাই এই যন্ত্রণার বিষয়গুলোই যে আসবে বেশী করে, সেটাই তো স্বাভাবিক।" মুর্শিদাবাদ থেকে আসা আরেক কবি অরুণাভ নাথ, যিনি নিজেকে অরুণা বলতেই বেশী স্বচ্ছন্দ, তিনি জানাচ্ছিলেন, "সবে তো শুরু হয়েছে আমাদের কবিতা নিয়ে চর্চা। এখন না হয় যন্ত্রণার কথাগুলোই বেশি করে আসুক, তারপরে আমাদের অধিকারের বিষয়গুলো আসবে। আগে তো আমি কে সেটা যেমন মানুষকে জানাতে হবে, তেমনই আমাদের মতো অন্যদেরও জানানো দরকার। তবেই না লড়াইটা লড়তে পারব আমরা।" "একটি রূপান্তরকামী মেয়ে কীভাবে তার জীবনকে দেখছে, তার প্রেম অথবা ব্যর্থতাকে দেখছে, সেই দৃষ্টিভঙ্গিটা আমাদের থেকে আলাদা'' বলছেন কবি সুবোধ সরকার কবি সুবোধ সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিলাম যে কবিতা হিসাবে কেমন লাগল তৃতীয় লিঙ্গের কবিদের রচনাগুলো? "একটি রূপান্তরকামী মেয়ে কীভাবে তার জীবনকে দেখছে, তার প্রেম অথবা ব্যর্থতাকে দেখছে, সেই দৃষ্টিভঙ্গিটা আমাদের থেকে আলাদা। তবে অন্যদিকে শৈলী অথবা ম্যাচিওরিটির দিক থেকে মূল স্রোতের কবিতার তুলনায় হয়তো তারা এখনও কিছুটা যেন কাঁচা। তবে আমি বলব, এই কাঁচা থাকাটা ভাল। কাঁচা থাকাটাই সততা," বলছিলেন মি সরকার। রূপান্তরকামীরা কবিতা লিখছেন ঠিকই, তবে এখনও সেগুলো মূলধারার সাহিত্য পত্রিকাগুলোতে জায়গা করে নিতে পারে নি। তাঁরা বলছেন, সাহিত্য পত্রিকাগুলো তাদের কিছুটা ব্রাত্যই করে রাখে এখনও। তাই নিজেরাই সাহিত্য পত্রিকা বার করেন এই রূপান্তরী কবিদের কেউ কেউ। চট্টগ্রাম চাঁদাবাজির পরিবর্তে পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিজড়া আরো পড়ুন: শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালেন হিজড়া নারী হিজড়া জীবন: বিড়ম্বনার শেষ কোথায়? পাকিস্তানে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের পরিচয় তৈরির লড়াই "অপরিচিত পুরুষের সাথে যখন ফেসবুকে ��মার পরিচয় হলো" বাংলাদেশে কতটা বৈষম্যের শিকার হিজড়ারা? কীভাবে ঘুরে দাঁড়ালেন শাম্মী হিজড়া? কেউ কলেজের প্রিন্সিপাল, কেউ অধ্যাপক, কেউবা স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই। কেউ নাচ গান করে অর্থোপার্জন করেন। তবে সকলেই কবিতা লেখেন, কেউ গান বাঁধেন। আরও একটা বিষয়ে এঁদের মধ্যে মিল রয়েছে - এই কবিরা সকলেই রূপান্তরকামী। +text: বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোতে টের্স্টিং অনেক কম হচ্ছে কারণটা কী? জুন মাস থেকেই ভারতে ভাইরাস সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে - মোটামুটি যে সময়টায় দেশটিতে কঠোর লকডাউন তুলে নেয়া হয়েছিল। ভারতে জনসংখ্যা ১৩০ কোটি - তাই দেশটিতে মোট সংক্রণমণের সংখ্যাটাও বড়। তাতে বিস্ময়ের কিছু নেই। কিন্তু দেশটিতে সংক্রমণের হার বাড়ছে ব্যাপকভাবে এবং উদ্বেগজনক হারে। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে মে এবং জুন মাসে সংক্রমণের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছানোর পর এখন আক্রন্তের সংখ্যা কমে আসছে। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সংক্রমণের চিত্র বাংলাদেশের চিত্র কী? বাংলাদেশে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায় জুন মাসের মাঝামাঝি। জুলাই মাসের শেষ দিক থেকে তা কমে আসছে। পাকিস্তানে জুন মাসে করোনাভাইরাস সংক্রমণ সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছিল। তখন প্রতিদিন ৬ হাজার করে নতুন সংক্রমণ নিশ্চিত হচ্ছিল। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসে সে সংখ্যা কমে দৈনিক কয়েকশ'তে নেমে এসেছে। সেখানে পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর স্কুলও খুলেছে। নেপালে সার্বিকভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সংখ্যা কম ছিল। তবে তা শীর্ষ চূড়ায় পৌঁছেছিল জুন মাসে। তার পর তা কমছিল, কিন্তু এখন আবার বাড়ছে। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোতে টের্স্টিং অনেক কম হচ্ছে আফগানিস্তানে দৈনিক সংক্রমণ এখন খুবই কমে গেছে। তবে দেশটির সরকারি পরিসংখ্যানের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। শ্রীলংকায়ও সংক্রমণ খুবই কম। এপ্রিল থেকে এখানে সংক্রমণে কয়েক দফায় উর্ধগতি দেখা গেছে কিন্তু সংখ্যার দিক থেকে তা অপেক্ষাকৃত কম। দেশটিতে কড়া কোয়ারেন্টিন ও লকডাউন, এবং কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং করা হয়েছে। শ্রীলংকায় কঠোর কোয়ারেন্টিন, টেস্টিং, ও কনট্যাক্ট ট্রেসিং করা হয়েছে ভারত এখন টেস্টিংএর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে। ২১শে আগস্ট সেখানে একদিনে ১০ লক্ষ টেস্ট করা হয়েছিল। ভাইরোলজিস্ট ড. রশিদ জামিল বলছেন, জন��ংখ্যার অনুপাতে হিসেবে এটা তেমন বড় সংখ্যা নয়, তবে মিলিয়নপ্রতি টেস্টের সংখ্যা্র দিক থেকেও এটা কম। ভারতে এ পর্যন্ত ৬ কোটি টেস্ট করা হয়েছে। পাকিস্তানে করা হয়েছে ত্রিশ লক্ষ। কিন্তু এই দেশগুলোতে অন্য অনেক দেশের তুলনায় টেস্টিং করা হয়েছে অনেক কম। পাকিস্তান ও বাংলাদেশে টেস্টিংএর মাত্রা কমে গেছে। তা না হলে এটা করোনা পজিটিভ কেসের সংখ্যার ওপর একটা প্রভাব ফেলতো। বাংলাদেশে সরকার জুলাই মাসে করোনাভাইরাস টেস্টের জন্য উচ্চ ফি বেঁধে দেয় - আর তার পর দেশটিতে টেস্টের সংখ্যা কমে যায়। তা ছাড়া দেশটিতে ভুয়া করোনা নেগেটিভ টেস্ট সার্টিফিকেট বিক্রি নিয়ে একটি কেলেংকারিও হয়েছে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস টেস্টিংএর জন্য ফি নির্ধারণের পর টেস্টিংএর সংখ্যা কমেছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিটি নিশ্চিত করোনাভাইরাস কেসের বিপরীতে ১০ থেকে ৩০টি টেস্টের যে মাত্রা বেঁধে দিয়েছে - দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো সেই মানদন্ডে ভালো করেনি। তবে নেপাল এবং ভারত এখন সেই মানদন্ডে পৌঁছেছে। রাশিয়া এবং জাপানের জনসংখ্যা বাংলাদেশের মতই। কিন্তু তারা অনেক ব্যাপকভাবে টেস্ট করছে। দক্ষিণ এশিয়ার বাইরে প্রতিটি নিশ্চিত কেসের বিপরীতে অনেক বেশি টেন্ট করা হয়েছে রাশিয়ায় প্রতি ৩৯ জনে একজন এবং জাপানে ২৮ জনে একজন করোনাভাইরাস পজিটিভ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ প্রতি পাঁচটি টেস্টে একজন করোনা পজিটিভ পাচ্ছে - যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদন্ডের নিচে। দক্ষিণ এশিয়ায় করোনাভাইরাসে মৃত্যুহার কম কেন? ভারতে করোনাভাইরাসে সর্বমোট মৃত্যুর সংখ্যা এখন পৃথিবীতে তৃতীয় সর্বোচ্চ, কিন্তু আক্রান্তদের গুরুতর অসুস্থ বা মৃত্যু হবার অনুপাত বৈশ্বিক গড়ের তুলনায় কম। দক্ষিণ এশিয়ায় করোনাভাইরাসে মৃত্যু হার তুলনামূলকভাবে কম দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোতেও মৃত্যুর মোট সংখ্যা বা আনুপাতিক হার পৃথিবীর অন্য অঞ্চলগুলোর চেয়ে কম। এখানে উপাত্তের নির্ভরযোগ্যতা বা অনেক মৃত্যুর খবর না পাওয়াকে বিবেচনায় নিলেও - এ পার্থক্য চোখে পড়ার মত, বলছেন ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ প্রফেসর কামরান সিদ্দীকি। তার মতে, এর সবচেয়ে বেশি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হলো - ইউরোপ বা যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় দক্ষিণ এশিয়ার জনগোষ্ঠীগুলোতে তরুণতরদের সংখ্যা বেশি। করোনাভাইরাস: সুস্থ হয়ে উঠতে ��তদিন লাগে? নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে করোনাভাইরাস : কীভাবে বানাবেন আপনার নিজের ফেসমাস্ক আপনার কি দ্বিতীয়বার কোভিড ১৯ সংক্রমণ হতে পারে? টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? 'হার্ড ইমিউনিটি' কী, এর জন্য কতটা মূল্য দিতে হবে? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সংখ্যা ৫০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে, কিন্তু সে তুলনায় প্রতিবেশী দেশগুলোর সংক্রমণের হার বেশ কম। +text: নতুন সনাক্ত হওয়া এই ভাইরাসের আগে আরো ছয় ধরণের করোনাভাইরাস সনাক্ত করা হয়েছে যা মানুষকে আক্রান্ত করে নতুন এই ভাইরাসে ৫০ জন আক্রান্ত হওয়ার কথা নিশ্চিতভাবে জানা গেছে বলে জানানো হয়, কিন্তু যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন এই সংখ্যা এক হাজার ৭শ জনেরও বেশি। গত ডিসেম্বরে ইউহান শহরে সনাক্ত হওয়ার পর থেকে এখনো পর্যন্ত দুই জন শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় মারা গেছে। "গত সপ্তাহের তুলনায়ও এ সপ্তাহে আমি অনেক বেশি উদ্বিগ্ন," বলেন রোগ প্রাদুর্ভাব বিষয়ক বিজ্ঞানী অধ্যাপক নিল ফার্গুসন। লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের গ্লোবাল ইনফেকশাস ডিজিজ অ্যানালাইসিস এর এমআরসি সেন্টার এই গবেষণাটি করেছে। এই প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাজ্য সরকার এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতো সংগঠনের পরামর্শক হিসেবে কাজ করে থাকে। সিঙ্গাপুর এবং হংকং ইউহান থেকে আগত বিমান যাত্রীদের স্ক্রিনিং শুরু করেছে। শুক্রবার থেকে নিজেদের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর যথা সান ফ্রান্সিসকো, লস এঞ্জেলেস এবং নিউইয়র্কে একই ধরণের পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও। আক্রান্তের সংখ্যা কিভাবে হিসাব করা হয়েছে? এই সমস্যাটি কতটা ভয়াবহ হবে তা নির্ভর করে অন্যান্য দেশে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার কতটি ঘটনা পাওয়া যায় তার উপর। যদিও এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব চীনের ইউহান শহরকে কেন্দ্র করেই রয়েছে, তবে থাইল্যান্ডে দুই জন এবং জাপানে একজন আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। "এ জন্যই আমি ভয় পাচ্ছি," বলেন অধ্যাপক ফার্গুসন। তিনি বলেন: "ইউহান শহর থেকে রোগটি অন্যান্য দেশের তিন জন ব্যক্তির মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে, তার মানে হচ্ছে আক্রান্তের এই সংখ্যা বাস্তবে আরো অনেক বেশি হতে পারে যা হয়তো এখনো নজরে আসেনি।" এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন সংখ্যা পাওয়া অসম্ভব কিন্তু আক্রান্ত হ��য়ার উপসর্গ-যা ভাইরাসের উপর নির্ভর করে, স্থানীয় জনসংখ্যা এবং ফ্লাইটের তথ্য থেকে এ সম্পর্কিত একটা ধারণা পাওয়া যেতে পারে। ইউহান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি এক কোটি ৯০ লাখ মানুষ ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু এই বিমানবন্দর ব্যবহার করে প্রতিদিন মাত্র ৩ হাজার ৪০০ মানুষ আন্তর্জাতিক সফর করে থাকে। এ বিষয়ে বিস্তারিত হিসাব, বিজ্ঞান বিষয়ক একটি জার্নালে প্রকাশের আগে যেটি অনলাইনে পোস্ট করা হয়েছে তাতে দেখা যায় যে, ১৭০০ মানুষ এই রোগে এখনো পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে। আরো পড়তে পারেন: 'সোয়াইন ফ্লু' নিয়ে কি উদ্বেগের কারণ আছে? শীতকালে শিশুদের রোগ থেকে দূরে রাখবেন যেভাবে ২০১৯ সালে চিকিৎসাশাস্ত্রে সেরা আবিষ্কারসমূহ বেইজিংয়ের দক্ষিণের ইউহান শহরে প্রথম নতুন এই ভাইরাস সনাক্ত করা হয়। এটার অর্থ কী? অধ্যাপক ফার্গুসন বলেন, "এখনই হুঁশিয়ারি দেয়াটা একটু অগ্রিমই হয়ে যায়" কিন্তু তিনি গত সপ্তাহের তুলনায় এখন "আরো বেশি উদ্বিগ্ন" বলে জানান। চীনের কর্তৃপক্ষ বলছে, এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তিতে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার কোন ঘটনা এখনো দেখা যায়নি। বরং ভাইরাসটি আগে শুধু পশু-পাখিকে আক্রান্ত করলেও এটি এখন আরো শক্তিশালী হয়েছে এবং এটি মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ছে। এই ভাইরাসটি ইউহানের একটি সিফুড এবং বন্যপ্রাণীর বাজারের আক্রান্ত পশু থেকে এসেছে বলেও জানানো হয়। অধ্যাপক ফার্গুসন বলেন: "মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাটিকে আগের চেয়ে আরো গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিত।" "করোনাভাইরাস সম্পর্কে আমরা যা জানি তা বিশ্লেষণ করে আমার যে ধারণা সেটি হচ্ছে যে, শুধুমাত্র পশুর সংস্পর্শ এতো বেশি সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হওয়ার একমাত্র কারণ হতে পারে না।" কোন একটি ভাইরাস কিভাবে ছড়িয়ে পড়ছে তা জানাটাই এটির হুমকি পরিমাপের অন্যতম উপায়। ভাইরাসটি আসলে কী? আক্রান্ত রোগীদের কাছ থেকে ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ করে তা গবেষণাগারে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। চীনের কর্তৃপক্ষ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এই সংক্রমণ যে ভাইরাসের কারণে হচ্ছে সেটি আসলে এক ধরণের করোনাভাইরাস। অনেক ধরণের করোনাভাইরাস রয়েছে, কিন্তু শুধু ছয় ধরণের ভাইরাস মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে। নতুন ভাইরাস-সহ এটি হবে সপ্তম। একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে দেখা দেয় সাধারণ সর্দি, কিন্তু মারাত্মক ধরণের সংক্রমণ বা সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম বা সংক্ষেপে সার্স হচ্ছে এক ধরণের করোনাভাইরাস। যাতে ২০০২ সালে ৮০৯৮ জন আক্রান্ত হয়েছিল এবং এদের মধ্যে ৭৭৪ জন মারা গিয়েছিল। ভাইরাসের জিনগত বৈশিষ্ট্য (জেনেটিক কোড) বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে, মানুষকে আক্রান্ত করা অন্য করোনাভাইরাসের তুলনায় সার্সের সাথে এটির বেশি মিল রয়েছে। এই ভাইরাসের কারণে রোগীরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয় এবং এদের মধ্যে দুই জন মারা যায়। অন্য বিশেষজ্ঞরা কী বলছে? ওয়েলকাম মেডিকেল রিসার্চ চ্যারিটির পরিচালক ডা. জেরেমি ফারার বলেন: "এই মহামারি থেকে আরো অনেক কিছু আসতে পারে।" "অনিশ্চয়তা এবং তথ্যের ফাঁক রয়েই যায়, তবে এটা পরিষ্কার যে মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণের একটা নূন্যতম মাত্রা তো রয়েছেই।" "চীন এবং অন্যান্য দেশ থেকে আমরা আক্রান্ত হওয়ার খবর পাচ্ছি এবং এই সংক্রমণের ধরণ অনুযায়ী, আরো অনেক দেশে এ ধরণের আরো অনেক সংক্রমণের ঘটনা রয়েছে।" নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোনাথন বল বলেন: "যে বিষয়টা আসলেই গুরুত্বপূর্ণ সেটি হচ্ছে, গবেষণাগারে ব্যাপক হারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া এ ভাইরাসে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা বলাটা খুব কঠিন।" "কিন্তু আমাদের হাতে আরো তথ্য আসার আগ পর্যন্ত এই সংখ্যাটাকে আমাদের গুরুত্বের সাথে নিতে হবে, ৪১টি ক্ষেত্রে পশু থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ার তথ্য রয়েছে, তবে সনাক্ত হয়নি এমন আরো অনেক সংক্রমণ রয়েছে বলেও আশঙ্কা রয়েছে।" বিবিসি বাংলার আরো খবর: পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ঘোষণা লিবিয়ার পরিস্থিতি এতো জটিল হলো কিভাবে? সামরিক বাহিনীর পক্ষে খামেনির সাফাই চীনে রহস্যজনক ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া মানুষের সংখ্যা দেশটির সরকারি ভাবে প্রকাশিত সংখ্যার তুলনায় আরো অনেক বেশি বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। +text: বাংলাদেশে ২০১৪ সালেই দিনে কমপক্ষে ২৭০০০ টন প্লাস্টিক ব্যবহৃত হতো। ব্যবহার বছরে বছরে বাড়ছে। বিবিসিকে তিনি বলেন - বাংলাদেশে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র-কণা দেদারসে ব্যবহৃত হচ্ছে প্রসাধন সামগ্রীতে। সিউয়ারেজ হয়ে জলাভূমিকে গিয়ে পড়ায় মাছ তা খাছে। তারপর মাছের মাধ্যমে তা মানুষের ফুড-চেইনে ঢুকে পড়েছে। তিনি বলেন, এতদিন উদ্বেগ ছিল পরিবেশ এবং জীব বৈচিত্র্যের ওপর প্লাস্টিকের প্রভাব নিয়ে, "কিন্তু এখন স্বাস্থ্যের ক্ষতি বিশেষ করে ভাবিয়ে তুলছে।" বাংলাদেশে প্লাস্টিকের ব্যবহার বৃদ্ধি নিয়ে ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেন অধ্যাপক মজুমদার। ১৯৯০ সালে যেখানে দিনে ৬৫০০ টন প্লাস্টিক ব্যবহৃত হতো, সেখানে ২০১৪ সালে তা দাঁড়ায় ২৭,০০০ টনে। তিনি বলেন, এ হার চলতে থাকলে ২০২৫ সালে বাংলাদেশে প্লাস্টিকের ব্যবহার দাঁড়াবে প্রতিদিন ৫০,০০০ টন। "এই চিত্র খুবই বিপজ্জনক।" শপিং ব্যাগের পাশাপাশি আসবাব, গৃহস্থালি এবং বাণিজ্যিক কাজে বল্গাহীনভাবে বাড়ছে প্লাস্টিকের ব্যবহার। আরও পড়ুন: ধর্ষণ নিয়ে ভারতে বাবা-মায়েরা বাচ্চাদের কী বলেন বিশ্বব্যাপী ক্রিকেটারদের কার বেতন কেমন? কসমেটিক্সে ব্যবহৃত হচ্ছে ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা যা খাল নদীতে গিয়ে মাছের মাধ্যমে ফুড চেইনে ঢুকে পড়ছে পলিথিন নিষিদ্ধ কিন্তু বাড়ছে ব্যবহার ২০০২ সালে বাংলাদেশে পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে আইন করা হয়। কিন্তু ড. মজুমদার বলেন, সেই আইনের তোয়াক্কা আর কেউ এখন করছে না। তিনি হিসাব দেন, বাংলাদেশে এখন দিনে ১ কোটি ৪০ লাখ পলিথিন ব্যাগ ব্যবহৃত হচ্ছে। "প্রথম দুই-তিন বছর সরকারি কর্তৃপক্ষ, পুলিশ খুবই তৎপর ছিল। প্রায়ই বাজারে বাজারে অভিযান হতো, কিন্তু তারপর তা ধরে রাখা যায়নি...উপযোগী তেমন বিকল্প বের না হওয়ায় মানুষও পলিথিন ব্যবহার শুরু করে দেয়।" পলিথিনের বিকল্প হিসাবে টিস্যু ব্যাগ নামে যে ব্যাগের ব্যবহার শুরু হয়, ড: মজুমদারের মতে, সেটার উপাদানও মূলত প্লাস্টিক। পলিথিন ব্যাগের পাশাপাশি বাংলাদেশে বর্তমানে গড়ে প্রতিদিন ৩০ লাখেরও বেশি টিস্যু-ব্যাগ ব্যবহার হয়। ঢাকার স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড: আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার বাংলাদেশে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ে একটি গবেষণা করেছেন। +text: ফারাক্কা বাঁধের কারণে বাংলাদেশে পানির প্রবাহ কমতে থাকার প্রেক্ষাপটে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে গঙ্গা চুক্তি হয়। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিহার এবং উত্তর প্রদেশের বেশ কয়েকটি শহরে বন্যা হওয়ায় গতকাল সোমবার এই গেটগুলো খুলে দেয় তারা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা চলছে। তার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায় যে, প্রতিবছর জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ফারাক্কা বাঁধের গেটগুলো খোলা থাকে যা নিয়মিত ব্যবস্থাপনারই অংশ। পানি ভাগাভাগি হ���় যেভাবে: ভারত কোন মৌসুমে এই বাঁধের স্লুইস গেট বন্ধ রাখবে, কখন খুলে দেবে, সে বিষয়ে ফারাক্কা পানি বণ্টন চুক্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারত কী পরিমাণ পানি পাবে সেটা নির্ভর করবে উজানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ, পানির প্রবাহ ও গতিবেগের ওপর। ফারাক্কা বাঁধের কারণে বাংলাদেশে পানির প্রবাহ কমতে থাকার প্রেক্ষাপটে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৩০ বছর মেয়াদী গঙ্গা চুক্তি হয়। স্যাটেলাইট থেকে ধারণকৃত ছবিতে ফারাক্কা বাঁধ। সেই চুক্তি অনুযায়ী, শুষ্ক মৌসুমে অর্থাৎ পহেলা জানুয়ারি থেকে ৩১শে মে পর্যন্ত দুই দেশ চুক্তিতে উল্লেখিত ফর্মুলা অনুযায়ী পানি ভাগাভাগি করে নেবে। চুক্তিতে বলা হয়েছে, নদীতে ৭০ হাজার কিউসেক বা তার কম পানি থাকলে দুই দেশ সমান সমান পানি ভাগ করে নেবে। পানির পরিমাণ ৭০ হাজার কিউসেক থেকে ৭৫ হাজার কিউসেক হলে ৪০ হাজার কিউসেক পাবে বাংলাদেশ। অবশিষ্ট প্রবাহিত হবে ভারতে। আবার নদীর পানির প্রবাহ যদি ৭৫ হাজার কিউসেক বা তার বেশি হয় তাহলে ৪০ হাজার কিউসেক পানি পাবে ভারত। অবশিষ্ট পানি প্রবাহিত হবে বাংলাদেশে। তবে কোন কারণে যদি ফারাক্কা নদীর পানির প্রবাহ ৫০ হাজার কিউসেকের নীচে নেমে যায় তাহলে দুই দেশে কে কী পরিমাণ পানি পাবে সেটা পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবে। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বাংলাদেশে পানির প্রবাহ পরিমাপ করা হয়। কোন মৌসুমে কে কতো পানি পাবে বাংলাদেশ ও ভারত যার যার ন্যায্য হিস্যা পেল কিনা সেটা এই জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে দুই দেশের নদী কমিশনের পর্যবেক্ষণ দল। বাংলাদেশে কী পরিমাণ পানি প্রবেশ করছে বা সরে যাচ্ছে সেটা পরিমাপ করা হয় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে। অন্যদিকে ভারতের অংশে দৈনিক পানির প্রবাহ পর্যবেক্ষণ ও রেকর্ড করা হয় ফারাক্কা ব্যারেজের নীচে, ফিডার ক্যানেলে এবং ন্যাভিগেশন লকে। জুন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত অর্থাৎ বর্ষা মৌসুম জুড়ে পানি কী পরিমাণ আটকে রাখা হবে বা ছাড়া হবে সেটা নির্ভর করে ভারতের অংশে গড় বৃষ্টিপাত ও নদীর পানি প্রবাহের ওপর। বাংলাদেশের যৌথ নদী কমিশনের পরিচালক মাহমুদুর রহমান জানান, "ফারাক্কা বাঁধের সামনে যে পন্ড থাকে, সেখানে পানির উচ্চতা মাপার জন্য একটি রেকর্ডিং লেভেল থাকে যে এই পর্যন্ত পানি ধরে রাখলে বাঁধের কোন ক্ষতি হবে না।" "পানি ওই ডেঞ্জার লেভেল অতিক্রম করলেই তারা গেটগুলো একে একে খুলে দিয়ে পানি ছাড়তে থাকে। না হলে পুরো বাঁধ পানির তোড়ে ভেসে যাবে। বাংলাদেশ যেহেতু ভাটির দেশ তাই সমুদ্রে যাওয়ার আগে সেই পানির ধাক্কাটা আমাদের ওপর দিয়েই যায়।" এরপর নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে পন্ডে পানির লেভেল অনুযায়ী পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আরও পড়তে পারেন: ভারতের সাথে গঙ্গা চুক্তির ২০ বছর: কী পেল বাংলাদেশ? ফারাক্কা ভেঙে দেয়ার দাবি ভারতের ভেতরেও উজান-ভাটি দুদিকেই ক্ষতি করছে ফারাক্কা বাঁধ হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচ দিয়ে চলছে মোটর সাইকল। ফারাক্কা নিয়ে কেন এতো বিতর্ক ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তারা নিজেদের ইচ্ছামতো অনিয়ন্ত্রিতভাবে পানি অপসারণ করছে, অথবা পানি আটকে দিচ্ছে। এই অভিযোগ অস্বীকার করে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার বলেন, "পানি বণ্টনের বিষয়টি আসে শুষ্ক মৌসুমে, বর্ষার মৌসুমে সেটা পর্যবেক্ষণ করা হয় না।" "যখন আবহাওয়া শুষ্ক থাকে তখন এই নদীর পানি বণ্টনের যে যৌথ কমিটি আছে তারা নদীর পানির প্রবাহ পরিমাপ করে সিদ্ধান্ত নেয় কে কতোটুকু পানি পাবে। এখানে বাংলাদেশ কখনোই তার ন্যায্য হিস্যা পায়নি- এমন নজির নেই।" ভারতের হুগলী নদীতে পানি সরবরাহ এবং কলকাতা বন্দরটি সচল করার জন্য ১৯৭৪ সালে এই ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করা হয়, যার অবস্থান বাংলাদেশ থেকে ১৮ কিলোমিটার উজানে ভারতের ভূখণ্ডে গঙ্গা নদীর ওপরে। গত চার দশকেরও বেশি সময়ে এই বাঁধ গঙ্গা অববাহিকায় ব্যাপক পরিবর্তন আনে যার কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছে দুই দেশই। ভারতের বিহার ও উত্তরপ্রদেশে প্রতিবছর বন্যা ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ফারাক্কা বাঁধ সরিয়ে স্থায়ী সমাধান চেয়ে আসছেন। একই দাবি বাংলাদেশের পরিবেশবাদীদেরও।কেননা এই বাঁধের কারণে বর্ষার মৌসুমে বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমের বেশ কিছু জেলাও বন্যা ও নদী ভাঙনের কবলে পড়ে। শুষ্ক মৌসুমে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় বলে জানান বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের নদী ও পানি রক্ষা কমিটির নেতা ড. আবদুল মতিন। শুষ্ক মৌসুমে পদ্মার পানি শুকিয়ে পলি জমতে থাকে। বিবিসি বাংলাকে তিনি জানান, ফারাক্কা বাঁধের কারণে নদী তার স্বাভাবিক গতি আর নাব্যতা হারিয়ে ফেলছে। "নদীর প্রবাহ কমে যাওয়ায় পলি জমতে জমতে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে এতে নদীর খা���়িগুলোর পানি পরিবহণ ক্ষমতা কমে গেছে। এজন্য বন্যা ঠেকানো যাচ্ছে না। " অন্যদিকে গ্রীষ্ম মৌসুমে ভারত পানি আটকে রাখায় বাংলাদেশ প্রয়োজনের সময় পানি পাচ্ছে না বলেও তিনি জানান। এর সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়েছে কৃষিজমি, মৎস্য চাষ, নৌপরিবহন সর্বোপরি আবহাওয়ার ওপর। যা পরিবেশ বিপর্যয় ডেকে আনছে। পদ্মার অন্যান্য শাখা নদীও এ কারণে পানি সংকটের মুখে পড়েছে বলে জানান মি. মতিন। গত কয়েক সপ্তাহ প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি লকগেটের সবকটি খুলে দিয়েছে ভারত। এতে বাংলাদেশের উত্তর ও পশ্চিমের কয়েকটি জেলায় বন্যা ও নদী ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। +text: প্রায় ৫ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর প্রোফাইল ঘেঁটে, তাদের অনুমতি ছাড়াই সেখান থেকে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা একটি সিস্টেম দাঁড় করিয়েছিল। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় তারা ব্যবহারকারীদের সাইকোলজিক্যাল প্রোফাইলের ভিত্তিতে তাদের টার্গেট করে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন পাঠাতে থাকে। ফেসবুক বা গুগল যে আপনার অনেক ব্যক্তিগত তথ্য গোপনে সংরক্ষণ করছে, সেটা এই কেলেংকারি ফাঁস হওয়ার পরই কেবল জানা গেল, ব্যাপারটা কিন্তু এমন নয়। যারা খোঁজ-খবর রাখেন, তারা জানেন, এটা চলছে বহুদিন ধরেই। আরো পড়ুন: আপনার মোবাইল কি গোয়েন্দাগিরি করছে? ফেসবুকে ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপদ রাখবেন কীভাবে আপনার ফেসবুক ডিলিট করার কি সময় এসেছে? আপনার কি আদৌ কোন ধারণা আছে ফেসবুক বা গুগল আপনার জীবন সম্পর্কে কতটা জানে? অনলাইনে আপনার শেয়ার করা তথ্যের গোপনীয়তা সম্পর্কে যদি আপনার মধ্যে কোন উদ্বেগ থাকে, তাহলে সহজ কিছু পদক্ষেপ নিয়ে আপনি নিজেকে নিরাপদ রাখতে পারেন। বার্লিন ভিত্তিক একটি প্রযুক্তি কোম্পানি 'ট্যাকটিক্যাল টেক' এর সঙ্গে কথা বলে বিবিসি এই সহজ নির্দেশিকা তৈরি করেছে; ১. আপনার ফেসবুক প্রোফাইল ঠিক করুন ফেসবুক আপনাকে সব তথ্য ডাউনলোড করার অপশন দেয়। এর মধ্যে আপনার ছবি থেকে শুরু করে এ যাবত যত মেসেজ আপনি আদান-প্রদান করেছেন, সবকিছু। যদি এসব তথ্যের কপি পেতে চান, তাহলে জেনারেল একাউন্ট সেটিং এ যান। সেখানে 'ডাউনলোড এ কপি অব ইউর ফেসবুক ডাটা'তে ক্লিক করুন। এরপর সব ডাটা আপনার ইমেল ঠিকানায় চলে যাবে। জেনারেল একাউন্ট সেটিং থেকে আপনি 'অ্যাপস' এ ক্লিক করে দেখতে পারেন কোন অ্যাপসগুলি অপ্রয়োজনী���়। এসব অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ ডিলিট করতে পারেন। হয়তো বহু বছর আগে ফেসবুবকে একটি কুইজ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। সেই অ্যাপটি হয়তো আপনার অনেক তথ্য সংরক্ষণ করে রেখেছে। এরকম কোন অ্যাপ ডিলিট করার আগে দেখে নিতে পারেন, আপনার সম্পর্কে কত কিছু এই অ্যাপ জানে। আপনি নিজেই অবাক হয়ে যাবেন! এছাড়াও আপনাকে ট্যাগ করা হয়েছে এরকম বহু ছবি থেকেও নিজেকে আন-ট্যাগ করতে পারেন। প্রোফাইল পেজে গিয়ে অ্যাকটিভিটি লগ ভালো করে দেখুন। স্ক্রল করে যত ছবি আর পোস্টে আপনাকে ট্যাগ করা হয়েছে সেগুলো দেখুন। আপনার অপছন্দের ছবি আর পোস্ট ডিলিট করুন। ২. ওকে গুগল, আমার সম্পর্কে কতটা জানো তুমি? এমন সম্ভাবনা খুব বেশি যে আপনি প্রতিদিন অন্তত একবার গুগলের কোন না কোন কিছু ব্যবহার করেন। এবং বিশ্বের আর যে কোন কোম্পানির চেয়ে গুগল আপনাকে অনেক ভালোভাবে চেনে। আপনার গুগল একাউন্টে লগ ইন করুন। আপনার লোগোর ওপর ক্লিক করুন। এরপর প্রাইভেসি চেক আপ পেজে গিয়ে আপনার সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য নিজের নিয়ন্ত্রণে নিন। সেখানে তিন নম্বর ধাপে পার্সোনালাইজ ইউর গুগল এক্সপেরিয়েন্সে যান। এর মাধ্যমে গুগলের নিয়ন্ত্রণ আপনি নিজের হাতে নিয়ে নিতে পারেন। ভবিষ্যতে গুগল আপনার কোন তথ্য 'লগ' করবে, তার সীমা আপনি ঠিক করে দিতে পারেন। আপনার কী কী তথ্য গুগলের কাছে আছে, সেটা জানতে চাইলে এই লিংকটিতে যেতে পারেন: google.com/takeout ৩. লোকেশন ডাটা সম্পর্কে কতটা জানেন? আপনার যদি একটি স্মার্টফোন থাকে, তাহলে এমন সম্ভাবনা খুব বেশি যে আপনার অনেক তথ্য চলে যাচ্ছে থার্ড পার্টি অ্যাপসের কাছে। আপনি কে, কোথায় থাকেন, কোথায় যান, সব তাদের জানা। আপনার লোকেশন হিস্ট্রি জানতে আপনাকে যা করতে হবে: • Android: Open Google Maps > menu > Your timeline. Select individual items for more detail. • iPhone: Settings > Privacy > Location Services > scroll down and select System Services >scroll down and select Frequent/Significant Locations. Select individual items for more detail. On your mobile/desktop browser, visit: https://www.google.com/maps/timeline?pb যদি আপনি থার্ড পার্টি অ্যাপসকে আপনার ওপর নজরদারি করতে দিতে না চান তাহলে যেখানে গিয়ে সেটিং বদলাতে পারেন: • Android: Settings > Apps > App permissions > Location. • iPhone: Settings > Privacy > Location Services > manage location access on a per-app basis. ৪. প্রাইভেট ব্রাউজার ব্যবহারের চেষ্টা করুন কোন একটা শপিং সাইটে গিয়ে কিছু কেনার চেষ্টার পর নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন এরপর যে পেজেই যাচ্ছেন, সেই পণ্যের বিজ্ঞাপন দেখতে পাচ্ছেন? কিছু থার্ড পার্টি কোম্পানি আপনাকে টার্গেট করে এসব পাঠাচ্ছে। এরা পর্দার আড়ালে থে��ে আপনার সম্পর্কে অনেক তথ্য জোগাড় করে। আপনি কি সার্চ করছেন, কোন ওয়েবসাইটে যাচ্ছেন এবং আপনার আইপি এড্রেস কি, সব তাদের জানা। আপনার জন্য একটা দুঃসংবাদ হলো, বাজার চলতে কোন ব্রাউজারের ডিফল্ট সেটিংই আসলে প্রাইভেট বা গোপনীয় নয়। এরা সবাই কুকিজ থেকে শুরু করে ব্রাউজিং হিস্ট্রি, ওয়েব ফর্ম এন্ট্রি থেকে শুরু করে আরও নানা তথ্য মওজুদ করতে থাকে। তবে গুগল, ফায়ারফক্স এবং সাফারিতে প্রাইভেট বা 'ইনকগনিটো' ব্রাউজিং মডের সুযোগ আছে। এই মডে আপনার ব্রাউজিং হিস্ট্রি, কুকিজ, টেম্পোরারি ফাইল এবং ওয়েব এন্ট্রি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিলিট হয়ে যাবে। নিজে চেষ্টা করে দেখতে পারেন: Open your browser (Firefox, Chrome, Chromium or Safari) and go to Menu > New Private/Incognito Window (depending on the browser). ৫. নিজেকে প্রশ্ন করুন:আমার কী আসলে এত রকমের অ্যাপস দরকার? আপনি কি জানেন আপনার ফোনে কত রকমের অ্যাপস আছে? অনুমান করুন তো? এরপর নিজে গুনে দেখুন। যা ভেবেছিলেন তার চেয়ে বেশি? কোনটা রাখবেন কোনটা ডিলিট করবেন সেই সিদ্ধান্ত নেয়া সত্যিই কঠিন। তবে নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর আপনাকে সাহায্য করবে: এখন হয়তো আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন কোন অ্যাপগুলো ডিলিট করা যেতে পারে। আরো পড়ুন: ছেলে হারানো ইমামের মাইকিং ঠেকিয়ে দিল আরেকটি দাঙ্গা বিক্ষোভে উত্তাল গাজা সীমান্তে ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি সুচিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার দাবি ফেসবুকের কোটি কোটি ব্যবহারকারীর তথ্য তাদের অজান্তে 'ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা' চুরি করেছে বলে প্রকাশ পাওয়ার পর এখন তীব্র বিতর্ক চলছে 'ডাটা প্রাইভেসি' নিয়ে। +text: বি চৌধুরী, ড কামাল হোসেন, আর আসম আবদুর রবের মত নেতারা আছেন যুক্তফ্রন্টে এ দাবিগুলোতে বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার এবং নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানানো হয়। এ ছাড়াও নির্বাচনের সময় ৪০ দিনের জন্য ম্যাজিস্টেসি ক্ষমতাসহ সেনা মোতায়েনেরও দাবি জানানো হয়। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে কয়েকটি ছোট রাজনৈতিক দল মিলে এই যুক্তফ্রন্ট নামে জোট তৈরি করেছে। এতে আছে ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিকল্প ধারা, ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম, মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য, এবং আ স ম আবদুর রবের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল। এ জোটের নেতারা বলছেন, জামায়াতে ইসলামী ছাড়া যে কোন দল তাদের এ দাবির সাথে একমত হলে এই ঐক্য প্রক্রিয়ার অংশ হতে পারেন। বিবিসি বাংলায় এ নিয়ে আরও পড়ুন: 'উত্তর পাড়ার সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই' জামায়াতকে 'নেয়া যাবে না' বিরোধীদলের যুক্তফ্রন্টে 'কিছু হলে সব উত্তর পাড়ার দিকে তাকিয়ে বসে থাকে' সংবাদ সম্মেলনে পড়ে শোনানো দাবিগুলো হচ্ছে: ১. আসন্ন ১১শ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকলের জন্য সমান সুযোগ সুবিধা এবং লেভেলে প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বেই বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে রাজনৈতিক দলসমূহের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিগণ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। ২. অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাকস্বাধীনতা, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সকল রাজনৈতিক দলের সভাসমাবেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে, এবং আলাপ আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। ৩. কোটা সংস্কার এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রছাত্রীসহ সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আনীত মিথ্যা মামলাসমূহ প্রত্যাহার করতে হবে, এবং গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দিতে হবে। এখন থেকে নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা যাবে না। ৪. নির্বাচনের এক মাস পূর্ব থেকে নির্বাচনের পর ১০ দিন পর্যন্ত মোট ৪০ দিন প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনা মোতায়েন করতে হবে। এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণ করার পূর্ণ ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের উপর ন্যস্ত করতে হবে। ৫. নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের চিন্তা ও পরিকল্পনা বাদ দিতে হবে। বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বি. চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেনের নেতৃ্ত্বে গঠিত যুক্তফ্রন্ট আজ ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে ৫টি দাবি তুলে ধরেছে। +text: একেবারে হাইওয়ের মাঝখানে এসে থেমেছে যাত্রীবাহী বিমানটি ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মাশাহারে এই দুর্ঘটনায় অবশ্য বিমানটির ১৩৫ জন যাত্রীর সবাই অক্ষত রয়েছেন। কাস্পিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি তেহরান থেকে মাশাহারে যাচ্ছিল। কিন্তু বিমানবন্দরে অবতরণের সময় এটির ল্যান্ডিং হুইল পুরোপুরি বেরিয়ে আসেনি বলে মনে হচ্ছে। ব্যস্ত হাইওয়ের ওপর গি��়ে নামা বিমানটি থেকে যাত্রীরা দ্রুত নেমে আসছেন- এমন ছবি এবং ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে বলা হচ্ছে, বিমানটির পাইলট রানওয়েতে নামতে দেরি করেছিলেন, তাই বিমানটি রানওয়ে থেকে ছিটকে বাইরে চলে যায়। রানওয়েতে নামার সময় বিমানটি ল্যাণ্ডিং হুইল পুরো বের হয়ে আসেনি। বিমানটিতে ছিলেন এরকম একজন রিপোর্টার বলছেন, ম্যাকডোনেল ডগলাস বিমানটির পেছনের চাকাটি ভেঙ্গে যায়। এরপর চাকা ছাড়াই বিমানটি মাটির ওপর দিয়ে রানওয়ে পেরিয়ে হাইওয়েতে গিয়ে পড়ে। সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র রেজা জাফরযাদেহ আধা সরকারি ইসনা বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৫০মিনিটে বিমানটি রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে। তিনি জানান, ঘটনার ব্যাপারে তদন্ত শুরু হয়েছে। ইরানে বিমান চলাচলের নিরাপত্তা খুব ভালো নয়। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে একটি বিমান দুর্ঘটনায় ৬৬ জন নিহত হয়। ২০১১ সালেও একটি বিমান অবতরণের সময় রানওয়েতে বিধ্বস্ত হয়ে বেশ কিছু যাত্রী মারা যায়। নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইরানের অন্তত দুটি এয়ারলাইন্সের ওপর নানা বিধিনিষেধ দিয়েছে। অন্যান্য খবর: উহানের বাংলাদেশিদের বিচলিত না হবার আহ্বান কোন দেশে পড়তে যেতে চান বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা? ক্রিকেট: পাঁচ বছরে মুস্তাফিজের অবনতি কতটা দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের বিমানবহরের আধুনিকায়ন আটকে আছে, তাদের বিমানগুলো অনেক পুরোনো। ২০১৫ সালে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর ইরান তাদের বিমান বহর আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর মার্কিন কোম্পানিগুলোর ওপর ইরানের কাছে যাত্রীবাহী বিমান বিক্রির ওপর আবার বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। ইরানের একটি যাত্রীবাহী বিমান রানওয়ে থেকে ছিটকে একটি ব্যস্ত মহাসড়কের মাঝখানে গিয়ে পড়েছে। +text: সৌদি অর্থনীতি সংকটে পড়েছে করোনাভাইরাসের কারণে সৌদি সরকার দেশটিতে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) তিনগুন বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। এর পাশাপাশি সরকারি কর্মচারিদের যে মহার্ঘ ভাতা দেয়া হতো, সেটি বন্ধ রাখা হচ্ছে। তেল সমৃদ্ধ সোদি আরবের অর্থনীতি করোনাভাইরাস মহামারির কারণে তীব্র সংকটে পড়েছে। তার বিশ্বে তে��ের চাহিদা কমে যাওয়ার পাশাপাশি তেলের দামও পড়ে গেছে অনেক। সৌদি আরবে মূল্য সংযোজন কর চালু করা হয়েছিল মাত্র দুবছর আগে। মূলত তেল বিক্রির অর্থের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা কমাতে সৌদি সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে অন্য অনেক দেশের তুলনায় এই করের পরিমান ছিল বেশ কম, মাত্র ৫ শতাংশ। এখন এক লাফে সৌদি আরবে মূল্য সংযোজন কর তিনগুন বাড়িয়ে করা হচ্ছে ১৫ শতাংশ। জুলাই মাস থেকে এই বর্ধিত হারে কর দিতে হবে। আর সরকারি কর্মচারিদের তাদের সংসার খরচ চালানোর জন্য যে ভাতা দেয়া হয়, সেটি জুন মাস থেকেই বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। সৌদি আরবে সরকারি কর্মচারিদের মাস এক হাজার রিয়াল (২৬৭ ডলার) করে ভাতা দেয়া হতো। ২০১৮ সালে এই সরকার এই ভাতা চালু করেছিল তেলের দাম বৃদ্ধি এবং কর বৃদ্ধির কারণে যাতে সরকারি কর্মচারিরা দুর্ভোগে না পড়ে। অর্থনৈতিক সংস্কারের গতি এখন থমকে যেতে পারে সৌদি আরবের অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জাদান এক বিবৃতিতে বলেছেন, “এসব পদক্ষেপ হয়তো খুবই কষ্টকর, কিন্তু স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে সৌদি আরবের আর্থিক এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য তা খুব প্রয়োজন।” সৌদি আরব সরকারের ব্যয় আয়ের তুলনায় ক্রমশই বাড়ছে। শুধু এবছরের প্রথম তিন মাসেই বাজেট ঘাটতি বেড়ে গেছে নয়শো কোটি ডলার। তেলের দাম যেভাবে বিশ্ববাজারে পড়ে গেছে, সেটাই এর কারণ। এ বছরের প্রথম তিন মাসে তেল বিক্রি থেকে সৌদি আরবের রাজস্ব এসেছে ৩ হাজার ৪শ কোটি ডলার। এটি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২২ শতাংশ কম। সৌদি আরবের বৈদেশিক মূদ্রার মজুদ কমছে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে। মার্চ মাসে যে গতিতে তাদের বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভ কমেছে তার ফলে এটি ২০১১ সালের পর সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান দেশটিতে যে অর্থনৈতিক সংস্কারের চেষ্টা চালাচ্ছেন তা এখন করোনাভাইরাসের কারণে থমকে যাবে বলে মনে হচ্ছে। সৌদি সরকার গত বছর রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি আরামকোর শেয়ার বাজারে ছেড়ে প্রায় আড়াই হাজার কোটি ডলার তুলেছিল। সৌদি অর্থনীতি সংস্কার করে তেলের ওপর নির্ভরতা কমাতে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান যে নীতি নিয়েছিলেন, তাতে এটি ছিল অন্যতম প্রধান একটি বিষয়। করোনাভাইরাস নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা ���দ্বেগের? টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় করোনাভাইরাসের কারণে যেভাবে সৌদি আরবের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, তা মোকাবেলায় সৌদি সরকার ব্যাপক কাটছাঁটের পাশাপাশি কর বাড়িয়েছে তিনগুন। +text: রিপাবলিকান দলের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবিসি নিউজের খবর বলা হয়েছে, ব্রুস আলেকজান্ডার নামে ঐ ব্যক্তি রোববার বিমানে চড়ে হিউস্টন থেকে আলবাকার্কি যাচ্ছিলেন। আদালতের নথি থেকে জানা যাচ্ছে, এ সময় তিনি দু'বার সামনের সিটে বসা এক মহিলার স্তন স্পর্শ করেন। ঐ নারী, যার পচিয় গোপন রাখা হয়েছে, তিনি কর্তৃপক্ষকে বলেছেন, তিনি ভেবেছিলেন প্রথমবার হঠাৎ করেই স্পর্শ লেগে গেছে। কিন্তু দ্বিতীয়বার একই ঘটনা ঘটার সময় বিপত্তি বাধে। আদালতের তথ্য অনুযায়ী, ফ্লাইট চলাকালীন সময় ঐ মহিলার ঝিমুনি এসে গিয়েছিল। তখন মি. আলেকজান্ডার আবার তার দেহ স্পর্শ করেন। প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মার্কিন নারীদের বিক্ষোভ। আরো পড়তে পারেন: খাসোগজি হত্যা: সৌদি-মার্কিন চাপের মুখে এরদোয়ান? বাংলাদেশে ফোনালাপ ফাঁস করা কি অপরাধ? সংসদে কতটা বিরোধী দল হতে পেরেছে জাতীয় পার্টি? তখন ঐ নারী ঘুরে দাঁড়িয়ে তাকে জিজ্ঞেস করেন, কেন তিনি একাজ করছেন? এবং তাকে অবশ্যই এসব কাজ বন্ধ করতে হবে। এ নিয়ে হৈচৈ শুরু হলে বিমানের স্টুয়ার্ডরা ঐ নারীর সিট বদল করে দেন। বিমানটি আলবাকার্কিতে অবতরণের পর পুলিশ ব্রুস আলেকজান্ডারকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি পুলিশকে বলেন,"মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেছেন মেয়েদের গোপন স্থানে হাত দিলে কোন দোষ নেই।" পুলিশ তার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেছে। মঙ্গলবার দিনের আরো পরের দিকে তাকে আদালতে তোলা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রচারাভিযানের সময় একটি অডিও টেপ প্রকাশিত হয় যেখানে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বলতে শোনা গিয়েছিল যে সেলেব্রিটিরা চাইলে নারীদের অঙ্গ তাদের অনুমতি ছাড়াই খামচে ধরতে পারে। তার এই মন্তব্যের জন্য তার নিজের দলসহ সারা দেশজুড়ে প্রবল সমালোচনা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক ব্যক্তি, যাকে একজন নারীর বুকে হাত দেয়ার জন্য আটক করা হয়েছে, তিনি বলছেন, নারীদের অঙ্গ স্পর্শ করা দোষের কিছু না কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজে একথা বলেছেন। +text: জাতীয় সংসদে ব্যবসায়ীদের সংখ্যা বাড়ছে। এ বছরও ইতিমধ্যেই অনেক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী মনোনয়নপত্র নিয়েছেন বা জমা দিয়েছেন। রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ এই ব্যবসায়ীদের নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়ে ওঠাকে উদ্বেগজনক বলে মনে করেন সুশাসন নিয়ে কাজ করে এরকম সংগঠনগুলো। ফরিদপুর চার আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সৈয়দ মনজুরুল হক। টেকনোগ্রুপ নামের একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিক তিনি। মি. হক বলছেন, "আমার পরিবারে পলিটিকাল ব্যাকগ্রাউন্ড খুব স্ট্রং। সেজন্য আমি আমার এলাকাতে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িয়েছি। এলাকার মানুষজন বিশ্বাস করে আমার যে ক্লিন ইমেজ ও আমি যদি তাদের লিড করি তাহলে এলাকার উন্নতি হবে।" তিনি মনে করেন, রাজনীতি মানে মানুষের প্রয়োজন বুঝতে পারা, সমস্যার সমাধান দিতে পারা, এলাকার ভালো করা। এসব করতে পারলে রাজনীতি খুব একটা কঠিন নয় বলে মনে করেন তিনি। কিন্তু মি. হক নিজে রাজনীতিতে নিয়মিত নন। ব্যবসায়ী হিসেবেই তার বেশি পরিচিতি। কিন্তু রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ এই ব্যবসায়ীদেরকে দল থেকে মনোনয়ন দেয়া ও নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়ে ওঠাকে কিভাবে দেখেন পেশাদার ও ঝানু রাজনীতিবিদরা? খুলনা থেকে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী কামরুজ্জামান জামাল, যিনি সব মিলিয়ে ৩০ বছরের মতো রাজনীতি করছেন, তিনি বলছেন, "আমার চেয়েও যোগ্য ব্যক্তি মনোনয়ন পেলে কষ্টটা কম লাগে।" গার্মেন্ট কারখানার মালিকরা রাজনীতিতে ক্রমশই আগ্রহী হয়ে উঠছেন। আরো পড়তে পারেন: তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্স: আইনে কী আছে? বাংলাদেশের যে নারী বিবিসির ১০০ নারীর তালিকায় পুরুষ সমকামিতার বর্ণনা দেওয়ায় লেখকের জেল বাংলাদেশে কয়েকটি সংসদ নির্বাচনের তথ্য যাচাই করলে দেখা যায় ধীরে ধীরে ব্যবসায়ীদের নির্বাচনে দাঁড়ানো ও সংসদ সদস্য হয়ে ওঠার হার বাড়ছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের দেয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রথম সংসদে এমপিদের মধ্যে ব্যবসায়ী ছিল ১৭ শতাংশের মতো। দশম জাতীয় সংসদে তা বিপুল পরিমাণে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৯ শতাংশে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী সংগঠন ফেয়ার ইলেকশন মনিটরিং অ্যালায়েন্স ফেমার প্রেসিডেন্ট মুনিরা খান বলছিলেন কি কারণে আসলে দলগুলো ব্যবসায়ীদের মনোনয়ন দিচ্ছে। তিনি বলছেন, "দেশের যে রাজনীতি তা অনেকটাই অর্থের উপরে নির্ভর করে। ভোটাররাও তাদেরকে গ্রহণ করে। আদর্শবাদী একজন মাঠ-পর্যায়ের নেতা নির্বাচনে দাঁড়িয়ে কিন্তু পাশ করতে পারবে না। কারণ একজন ধনী ব্যবসায়ীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নির্বাচনে জেতা সম্ভব হয় না। পার্টি যখন নমিনেশন দেয় প্রথমেই ভাবে সে পাশ করে আসতে পারবে কিনা। কারণ সব দলই তো সরকার গঠন করতে চায়।" এবারো বহু প্রভাবশালী ব্যবসায়ী মনোনয়ন প্রত্যাশী। এর মধ্যে পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফিবিসিসিআইএর শীর্ষ পর্যায়ের নেতা যেমন রয়েছেন, তেমনি আরও নানা ধরনের ব্যবসায়ীও রয়েছেন। বিষয়টিকে উদ্বেগজনক মনে করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ডঃ ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলছেন, "অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে একটা উদ্বেগের জায়গা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের রাজনীতি, ব্যবসা আর বিনিয়োগ একাকার হয়ে যাচ্ছে।" রাজনীতিতে এলে ব্যবসায়ীরা নিজেদের স্বার্থে নীতি-নির্ধারণে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করছেন তিনি। তিনি একটি নমুনা দিয়ে বলছেন, "যেমন আমরা যেটা সম্প্রতি দেখেছি পোশাক শিল্প খাতে শ্রমিকদের অধিকার-ভিত্তিক আইনি সংস্কারের কথাগুলো যখন ওঠে তখন সংসদে পোশাক শিল্পের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িতদের এক ধরনের সক্রিয়তা দেখা যায়। অনেক সময় তাদের ইচ্ছামতো পরিবর্তন বা পরিবর্ধন হতেও দেখা যায়।" মনোয়নপত্র বিক্রি করার সময় বিএনপির অফিসের সামনে নেতা-কর্মীদের ভিড়। ব্যবসায়ী রাজনীতিবিদরা কর রেয়াত, ঋণ সুবিধা ইত্যাদি ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তার মতে, "রাজনীতিকে যদি ব্যবসা ও মুনাফা বিকাশের উপায় হিসেবে দেখা হয় তখন প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র বিনষ্ট হয়। যারা মূল রাজনীতির ধারক বাহক তারা ক্রমাগতভাবে কোণঠাসা হয়ে যান।" রাজনৈতিক দলগুলো ইতিমধ্যেই প্রার্থীদের যাচাই বাছাই শুরু করেছে। মনোনয়ন পাওয়ার এই দৌড়ে এবারও ব্যবসায়ীদের প্রাধান্য থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশে গত কয়েকটি সংসদ নির্বাচনে ব্যবসায়ীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও সংসদ সদস্য হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। +text: যে আটজনের সাজা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা প্রায় ৪০০ ব্যক��তিকে দাসত্বে বাধ্য করেছে। বলা হচ্ছে এটি যুক্তরাজ্যের আধুনিক যুগের সবচাইতে বড় দাসত্বের ঘটনা। যে অভিযোগে বিচার হল সংঘবদ্ধ এই চক্রটি মূলত পোল্যান্ড থেকে আসা ব্যক্তিদের নানা ভাবে ধোঁকা দিয়ে কাজ ও ভাল জীবনের লোভ দেখিয়ে পশ্চিম মিডল্যান্ড এলাকায় নিয়ে আসতো। কিন্তু তাদের কাজের নামে দাসের মতো রাখা হতো। তাদের কখনো কখনো ১৪ ঘণ্টা পর্যন্তও কাজ করানো হতো অথচ কোন পারিশ্রমিক দেয়া হতো না। তাদেরকে যেসব ঘরে আটকে রাখা হতো তার কিছু ছবি সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে। যাতে দেখা যাচ্ছে ভয়াবহ পরিবেশে তাদের থাকতে দেয়া হতো। ইঁদুরের সাথে একসাথে সেসব ঘরে তাদের থাকতে হতো। ভালো চাকরীর বদলে খুব নিম্ন মানের কাজে খাটানো হতো। পুলিশ বলছে, সাজা প্রাপ্তরা নিজেরাও পোল্যান্ডের বংশোদ্ভূত। এমন দুটি পোলিশ পরিবারের আটজন সদস্যকে আলাদা দুটি মামলায় বিচার করা হয়েছে। এরকম ভয়াবহ নোংরা পরিবেশে তাদের আটকে রাখা হতো। যেখানে তাদের মানব পাচার, জোরপূর্বক শ্রম এবং অর্থ পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর তাদের তিন থেকে এগারো বছরের সাজা দেয়া হয়েছে। যেভাবে বিষয়টি প্রকাশিত হল ২০১৫ সালে বন্দি দশা থেকে দুইজন পালিয়ে যাওয়ার পরই ওই চক্রের সদস্যদের তৎপরতা প্রকাশ হয়ে পড়ে। ওই দুইজন পালিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক শ্রম নিয়ে কাজ করে 'হোপ ফর জাস্টিস' নামে একটি দাতব্য সংস্থার কাছে নিজেদের দুর্দশার কথা তুলে ধরে। এর পরই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়। আরো পড়ুন: ব্রিটেনে লাখ লাখ মানুষ দাসত্বের শিকার 'আটজনের কাছে বিক্রি করা হয়, ধর্ষণ করতো তিনজন' আধুনিক বিশ্বে দাসত্বের জীবন তিন কোটি মানুষের এই চক্রের শিকার একজন মিরোস্লো লেহম্যান এর আগে বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তার দুর্দশার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছিলেন, "যে ঘরে আমাদের রাখা হতো সেটিতে ঘর গরম করার কোন ব্যবস্থা ছিল না। কোন গরম পানির ব্যবস্থা ছিল না। জানালার ফুটো দিয়ে সারাক্ষণ কনকনে বাতাস ঘরে ঢুকতো।" হুমকি ও মারধোর করে নিয়ন্ত্রণ এই চক্রটিতে ছিল পাঁচজন পুরুষ ও তিনজন নারী। তাদের শিকার ছিল তাদের নিজেদেরই দেশ পোল্যান্ডের ঘরবাড়িহীন ছিন্নমূল মানুষ, সাবেক কারাবন্দী এবং নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিরা। ২০১৫ সালে বন্দি দশা থেকে দুইজন পালিয়ে গিয়েছিলেন। তাদের শুরুতে বাসে করে যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসা হতো। তাদের মূলত আবর্জনা পুনর্ব্যবহার বা রিসাইক্লিং করার প্রতিষ্ঠানে অথবা খামারে কাজ করানো হতো। সেখান থেকে যে পারিশ্রমিক দেয়া হতো সেটি নেয়ার জন্য তাদের ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলানো হতো। কিন্তু ওই চক্রই সেই অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণে থাকতো এবং নিজেরা পারিশ্রমিক হিসেবে দেয়া অর্থ ভাগাভাগি করে নিয়ে নিত। চক্রের সদস্যরা বেন্টলীর মতো দামি গাড়িও ব্যাবহার করতো। ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই চক্রের সদস্যরা কুড়ি লাখ পাউন্ডের মতো অর্থের মালিক হয়েছে। কেউ কাজ করতে না চাইলে তাদের ভয়ভীতি দেখানো হতো, মারধোর করা হতো, পোল্যান্ডে তাদের পরিবারের সদস্যদের ক্ষতি করার হুমকি দেয়া হতো। খুন করার আগে নিজের কবর নিজেকেই খুড়তে হবে এমন ভয় দেখিয়েও তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতো এই চক্র। চক্রের সদস্যরা বেন্টলীর মতো দামি গাড়ি ব্যাবহার করতো। যেভাবে কাজ করতো চক্রটি চক্রের এক একজন ভিন্ন ভিন্ন দায়িত্ব পালন করতো। একজন পোল্যান্ড থেকে তাদের শিকার খুঁজে আনার দায়িত্বে ছিল। একজনের দায়িত্ব ছিল তাদের শুভেচ্ছা জানানো। নারীদের একজন তাদের সাথে শুরুতে খুব অমায়িক ব্যবহার করতো এবং শুরুর দিকে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে সহায়তা করতো। অপর একজন তাদের যুক্তরাজ্যে বেকারদের জন্য চাকরী দেয়ার সরকারি প্রতিষ্ঠানে নাম লেখাতেও সাহায্য করতো। ব্যাংকে গিয়ে অ্যাকাউন্টের অর্থ তোলার সময় বন্দিদের সাথে করে নিয়ে যাওয়া হতো। কিন্তু ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের অর্থ নিয়ে নেয়া হতো। সেই ব্যাংকের বিষয়াদি দেখভাল করার জন্য যিনি ছিলেন তাকে পুলিশ বর্ণনা করেছে 'খুব পরিশীলিত ও মার্জিতভাবে' নিজেকে উপস্থাপন করতে পারে এমন কেউ। কারোর চিকিৎসা দরকার হলে সেটিও পেতেন না এসব লোকেরা । বন্দিদশায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। অন্যান্য খবর: সড়ক দুর্ঘটনা: হাসপাতালে নেয়ার পথে এত মৃত্যু কেন? প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে মানুষ কতোটা সচেতন যুক্তরাজ্যে সংঘবদ্ধ একটি চক্রের আটজন সদস্যকে সাজা দিয়েছে দেশটির আদালত। +text: বিমান থেকে সোজা মনিবের বাড়িতে পৌছেঁ দেয়ার সার্ভিস চালু রিয়াদ বিমানবন্দরে এদের বড় অংশই এসে নামেন রিয়াদের কিং খালেদ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে। রিয়াদ এয়ারপোর্ট কোম্পানি, যারা এই বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে, তারা সম্প্রতি একটি সেবা চালু করেছে -- বিমান থেকে গৃহকর্মী���ের যার যার মনিবের বাড়িতে পৌঁছে দেবে, তাদের নিতে মনিবদের বিমানবন্দরে আসতে হবে না। কোম্পানি তাদের টুইটার পাতায় ছবি পোস্ট করেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে বিমানের দরজা থেকে একজন নারী গৃহকর্মী সোজা ঢুকে যাচ্ছেন গৃহকর্তার বাড়িতে। ঐ বিজ্ঞাপনে তারা লিখেছে, "আমরা আপনার গৃহকর্মীকে বিমান থেকে নিয়ে সোজা আপনার বাড়ি পৌঁছে দেব।" নতুন এই সেবার তারা নাম দিয়েছে তাওয়াসালাক। শব্দটির অর্থ -- সে (গৃহকর্মী) আপনার কাছে চলে আসবে। নিয়োগদাতা গৃহকর্তাদের অবশ্যই বড় অঙ্কের ফি গুনতে হচ্ছে। দুজন গৃহকর্মী সাথে নিয়ে বাজার করছেন এক সৌদি মহিলা টুইটারে অনেক সৌদি নাগরিক এই সার্ভিসের সমালোচনা করেছেন। অনেকেই লিখছেন গৃহকর্মীদের পণ্য হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। একজন লিখেছেন, "তাদেরকে কি কার্গো হিসাবে দেখা হচ্ছে?" আরেকজন লিখেছেন - গৃহকর্মীরা যাতে বিমানবন্দর থেকে পালিয়ে না যেতে তার জন্যই এই ব্যবস্থা। সৌদি আরব প্রতি বছর বিদেশ থেকে হাজার হাজার নারী গৃহকর্মী নিয়োগ করে। এদের অধিকাংশ আসে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে। সৌদি আরবে গৃহকর্মীদের অধিকার, থাকার পরিবেশ নিয়ে নিয়ে বিস্তর সমালোচনা রয়েছে। নিয়োগদাতাদের অনুমোদন ছাড়া তারা চাকরি বদলাতে বা কাজ ছেড়ে নিজের দেশে চলে যেতে পারেনা। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: নায়ক সালমান শাহ'র মৃত্যু: কী ঘটেছিল সেদিন 'ব্রিজ খেলতে দেখলে পরিবার বলতো জুয়া খেলছি' ভারতে গরু নিয়ে তুলকালাম, চামড়া শিল্প নিয়ে উদ্বেগ একটি কনডম বাঁচাতে পারে নতুন মায়ের জীবন বাংলাদেশ সহ বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলো থেকে প্রতিদিন শত শত নারী গৃহকর্মী কাজ নিয়ে সৌদি আরবে আসছেন। +text: বাংলাদেশে পলিথিন ব্যাগের স্তূপ এবার বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের প্রয়াস হচ্ছে প্রতিদিন ঘরের কাজে প্লাস্টিকের যেসব জিনিস ব্যবহার করা হয় তার প্রভাব কতটা ক্ষতিকারক হতে পারে সে বিষয়ে মানুষকে ওয়াকিবহাল করে তোলা৻ সেই লক্ষ্যে আজ এক অনুষ্ঠানে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হচ্ছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের তরফ থেকে৻ এই প্রবন্ধের রচয়িতা এবং জাতিসংঘের শিল্প বিষয়ক সংস্থা ইউনিডোর ভোক্তা অধিকার সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ জাহেদুর রহমান বলছেন প্লাস্টিকের জিনিসে অনেক সময়ে যে ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য সংযোজন করা হয়, যাকে অ্যাডিটিভ বলা হয়, সেগুলোর প্রভাব মানবদেহের ওপর বেশ গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে৻ তাই মি. রহমানের পরামর্শ হল বাঁচতে গেলে সরে আসতে হবে প্লাস্টিক থেকে৻ তিনি বলছেন প্লাস্টিকের জিনিস তৈরী করতে কী ধরনের পলিথিন বা রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হচ্ছে তার ওপরে নির্ভর করে সেই উপকরণ কতটা ক্ষতিকারক৻ মি. জাহেদুর রহমানের মতে প্লাস্টিকের ক্যান, বোতল ও দ্রব্যাদির পেছনে লেখা থাকা উচিত কী ধরনের উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে এবং সেটা জানার অধিকারও আছে ভোক্তাদের৻ কিন্তু বাংলাদেশে তেমনটা সচসরাচর হয়না বলেই তাঁর আক্ষেপ৻ প্লাস্টিকের ব্যবহার কেন পরিবেশের জন্যে ক্ষতিকারক তা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির নানান উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে৻ +text: ব্যানারে ফেস্টুনে ঢেকে যাওয়া মোহামেডানের প্রধান ফটক আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে আবাহনী ও মোহামেডানের মধ্যকার ম্যাচ রয়েছে। যেই ম্যাচটি ঘিরে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে উন্মাদনা বা আগ্রহের কমতি দেখা গিয়েছে ৯-১০ বছর আগে থেকেই। মি: কিরণের কাছে এই ম্যাচের তাৎপর্য জিজ্ঞেস করা হলে তিনি ফিরে যান অতীতে, "সেই সময় হলে তো এক মাস আগে থেকে হিসেব-নিকেশ শুরু হয়ে যায়, আবাহনী-মোহামেডান খেলা অমুক দিন, কীভাবে যাবো, মারামারি লাগলে কোন পথে বের হবো, রাস্তা বন্ধ থাকলে কোন পথে বের হবো, এমন জল্পনা কল্পনা শুরু হয়ে যেতো।" তিনি মনে করেন আবাহনী এখনো একটা ধারা ধরে রেখেছে, কিন্তু মোহামেডান ক্লাব হিসেবে অনেকটাই ব্যর্থ এখন। চলতি মৌসুমের পয়েন্ট তালিকা আরো পড়ুন: ৯ ম্যাচে ৫৪ গোল: কিশোরী ফুটবলারদের সাফল্যের রহস্য মেসিকে ছাড়িয়ে যাওয়া কে এই ভারতীয়? সাফ ফুটবল: ধারাভাষ্য নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে হাস্যরস চলতি মৌসুমে মোহামেডান চলতি মৌসুমে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে মোট ৭টি ম্যাচ খেলেছে। পয়েন্ট পেয়েছে ৫। লিগ টেবিলে দলটির অবস্থান ১০ নম্বরে, ১৩ দলের মধ্যে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ আয়োজন করার পর থেকে এই পেশাদার লিগের শিরোপা কখনোই পায়নি মোহামেডান। এর আগে ঢাকা লিগে ১৯বার শিরোপা জেতে মোহামেডান। এছাড়া ১০বার ফেডারেশন কাপ এবং ৩বার স্বাধীনতা কাপ জেতে দলটি। মোহামেডানের লোগো মোহামেডানের ব্যর্থতার পেছনে কারণ কি রাজনৈতিক? মোহামেডানের প্রবীণ ভক্ত নাজমুল আমিন কিরণ মনে করেন অর্থের যোগান একটা বড় ব্যাপার এখানে। "অনেকে ভালো দল নিয়ে এসেছে। সেক্ষেত্রে নতুন ক্লা���গুলো যেভাবে টাকা দিচ্ছে, সেখানে মোহামেডানের অর্থের যোগান খুবই কম," বলছিলেন মি: কিরণ। মোহামেডানের পরিচালক সরওয়ার হোসেন, যার মতে বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ফুটবলার সংকট সবচেয়ে বড় সমস্যা। দুই-তিনটি দল গঠনের পর আর ভালো মানের ফুটবরার বাকি থাকে না, পাইপলাইন বেশ দুর্বল। "শেষদিকের পাচঁ-ছয়টি দলের ফুটবলারদের মান সবই সমান, দেশের ফুটবলের মানের কারণেই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ফুটবলের সম্ভাবনা কমে যায়।" মোহামেডানের ক্লাব অফিস সংলগ্ন একাডেমি মাঠ "মোহামেডান মাঝারি মানের দল গঠন করে, কিন্তু নানা ধরণের সমস্যার কারণেই আসলে লিগ টেবিলে মোহামেডানের এই হাল।" তবে মি: সরওয়ারের কথায় উঠে আসে আরো একটি কারণ, "আমাদের ২০১১ সালের আগে সরকারের বিরোধী দলীয় লোকদের প্রাধাণ্য বেশি ছিল যার কারণে এটা ভেবেই নেয়া হয় যে এটা বিএনপির ক্লাব বা বিএনপির সমমনা লোকদের দ্বারা ক্লাবটি পরিচালিত হয়, কিন্তু এটা এখন নেই।" "মোহামেডান ক্লাবের জন্য যারা অর্থের যোগান দিতেন তাদের অনেকেই এখন নেই। যে ধরণের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী লোকদের সমাগম হলে মোহামেডান তার ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারতো তার সমন্বয়টা ঘটেনি।" "আগের যারা ডোনার ছিল তারা বিএনপি সমমনা ছিল, একটা ভয় দেখানো হয়ে থাকে যে কেউ যদি মোহামেডান সাপোর্ট করে তাহলে সে বিএনপির হয়ে যাবে, যেই কারণে অনেকে পিছপা হয়েছে," বলছিলেন মি: সরওয়ার। সাবেক তারকা ফুটবলার রনজিৎ সাহা স্মৃতির পাতায় পুরোনো দিনে কথা তুলে আনেন, "আগে বুঝতে পারতাম না যে এভাবে মানুষ আমাদের ভালোবাসতো এখন খালি স্টেডিয়াম দেখলে পার্থক্যটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। রেডিও, পত্রিকা পাগলের মতো ছুটতো আমাদের জন্য। এগুলো এখনকার ফুটবলারদের জন্য অনুভব করাও কঠিন।" "আমি স্টেডিয়াম গেলে এখন খারাপ লাগে, একে তো মাঠের খালি দশা আবার ফুটবলারদের মান সব মিলিয়ে।" রনজিৎ সাহা আবাহনী, মোহামেডান ও বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলেছেন। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর নিয়ে কেন এই বিরোধ কাশ্মীরে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ: নিহত ৪ ভিয়েতনামে ট্রাম্প-কিম বৈঠক: জেনে রাখতে পারেন যেসব তথ্য "আজকে যে খেলা আছে এটাই অনেকে জানে না, কারো কোনো উত্তাপই নেই। এটা তো খুবই দুঃখজনক, ভাবাই যায় না," বলছিলেন নাজমুল আমিন কিরণ, যিনি বাংলাদেশের ফুটবল ক্লাব মোহামেডানের একজন প্রবীণ ভক্ত। +text: সাপের কামড়ে বিশ্বে প্���তিবছর প্রায় এক লাখ মানুষের মৃত্যু হয় শুধু এই অঞ্চলই নয়, বিশ্বের যে কোনো অঞ্চলের বন জঙ্গলে পরিপূর্ণ এলাকা, আদিবাসী অধ্যূষিত অঞ্চল, পাহাড়ি জনপদ, নদী বা জলাশয়ের আশেপাশে থাকা জনবসতির মানুষের কাছে খুব পরিচিত প্রাণী সাপ। সরীসৃপ এই প্রাণীর কামড়ে বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় এক লাখ মানুষের মৃত্যু হলেও প্রাণী হিসেবে সাপ কিন্তু আগ্রাসী বা ভীতিকর প্রাণী নয়। সাপ সাধারণত নিজে থেকে এগিয়ে এসে মানুষকে আক্রমণ করে না। হুমকির মুখে পড়লে, হঠাৎ চমকে গেলে বা কোনঠাসা হয়ে গেলে সাপ আক্রমণ করে থাকে। সাধারণত গ্রামাঞ্চলে, কৃষি সংশ্লিষ্ট এলাকায়, জঙ্গল বা পাহাড়ি অঞ্চলের জনবসতিতে সাপে কাটার ঘটনা বেশি ঘটে থাকে। তবে যুগ যুগ ধরে এই অঞ্চলের কৃষিপ্রধান গ্রামীণ সমাজের মানুষের সাথে সাপের পরিচয় থাকলেও এখানকার মানুষের মধ্যে এখনও সাপকে কেন্দ্র করে নানান ভুল ধারণা বা কুসংস্কার কেন রয়েছে, সেই প্রশ্ন উঠতেই পারে। আরো পড়তে পারেন: বাংলাদেশে সাপের খামার: আইনত নিষিদ্ধ, মানছে না কেউ স্বেচ্ছায় ২০০ বিষধর সাপের কামড় খেয়েছেন যিনি সাপ কাটলে যে তিনটি কাজ করবেন, যে পাঁচটি কাজ করবেন না সাপের কামড়: কত ভয়ানক হুমকি? কিং কোবরা বা শঙ্খচূড় সাপ নিয়ে কেন নানা ধরণের ভুল ধারণা বিদ্যমান? রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক সুস্মিতা চক্রবর্তী মন্তব্য করেন এই অঞ্চলের ভৌগলিক পরিবেশের বিবেচনায় মানুষের জীবনযাত্রার সাথে সাপের যুক্ততা থাকার কারণে ঐতিহ্যগতভাবে এই অঞ্চলের সংস্কৃতির সাথে সাপের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তিনি বলেন, "গ্রামাঞ্চল, আদিবাসী অধ্যূষিত এলাকা, জঙ্গলাকীর্ণ বা পাহাড়ি এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার সাথে সাপের যুক্ততা শত শত বছর ধরে। এই যুক্ততার প্রতিফলন আমার লোকসাহিত্য, লোকবিশ্বাস, সংস্কার বা রীতিতে দেখতে পাই।" "সাধারণ মানুষের জীবনের সাথে সম্পৃক্ত বিষয়গুলোই তো সাহিত্য-সংস্কৃতিতে ফুটে ওঠে। সেভাবে জনজীবনের সাথে সাপের সম্পৃক্ততার কারণেই সাপ নিয়ে এত গল্প, কাহিনী রয়েছে।" সাপ নিয়ে একইসাথে ভয় এবং কৌতুহল থাকার কারণেই সাপকেন্দ্রিক নানা ধরণের রীতি-রেওয়াজ, কিংবদন্তী প্রচলিত রয়েছে বলে মনে করেন অধ্যাপক সুস্মিতা চক্রবর্তী। "সাপ নিয়ে মানুষের একদিকে যেমন ভয় রয়েছে, তেমনি সেই ভয়কে অতিক্রম করারও বাসনা রয়েছে। এজন্যই আমরা সাপকেন্দ্রিক বিভিন্ন আচার-প্রথা, পূজা, পৌরাণিক কাহিনী, কিংবদন্তীমূলক কাহিনী দেখতে পাই।" "সারা বিশ্বের আদিবাসী বা ঐ জাতীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে পরম্পরাগতভাবে এমন একটা প্রথা দেখা যায় যে, তারা যখন কোনো শক্তিকে ভয় পায়, তখন সেই শক্তিকে পূজা করার একটা প্রবণতা তাদের মধ্যে দেখা যায়।" সুস্মিতা চক্রবর্তী বলেন, "এই অঞ্চলেও সাপের দেবী হিসেবে মনসা দেবীকে পূজা করে সন্তুষ্ট করার একটা প্রথা ছিল - যেন মনসার বরে সাপ মানুষের কোনো অনিষ্ট বা অমঙ্গল করতে না পারে।" "একদিকে সাপের ভয় এবং সেই ভয়কে অতিক্রম করার মনস্তাত্বিক আকাঙ্খা ফুটে ওঠে সাপকে কেন্দ্র করে চলে আসা নানারকম সামাজিক রীতি-রেওয়াজে এবং সাহিত্য-সংস্কৃতিতে সাপ কেন্দ্রিক কাহিনীগুলোতে।" চেরা-আঁশযুক্ত বোরা সাপ সাপ নিয়ে যেসব ভুল ধারণা সাপ নিয়ে নানারকম ভুল বা অবৈজ্ঞানিক ধারণা আমাদের লোকসমাজে প্রচলিত রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি হল: সাপ দুধ খায় দুধ হজম করতে যেই উপাদানটি প্রয়োজন হয়, সাপের পাকস্থলিতে সাধারণত সেই উপাদানটিই কখনো তৈরি হয় না। অর্থাৎ সাপ কখনও দুধ হজমই করতে পারে না। অনেক সাপের ক্ষেত্রেই দুধ বিষের মত কাজ করে। কিছু সাপ দুধ খাওয়ার সাথে সাথে মারাও যায়। তবে সাপের খেলা দেখায় যারা, তাদের কাছে সাপ দুধ খাচ্ছে, এই দৃশ্য আপনি দেখেও থাকতে পারেন। সাপকে দীর্ঘদিন পানি না পান করানোর পর যে কোনো ধরণের তরল পদার্থ পান করতে দিলে তারা সেটাই পান করে। সাপকে দুধ খাওয়ানোর জন্য সাধারণত এই পদ্ধতিই অবলম্বন করে সাপের খেলা দেখানো ব্যক্তিরা। সঙ্গীকে হত্যা করলে সাপ প্রতিশোধ নেয় সাপের সাধারণত কোনো ধরণের সামাজিক বা পারিবারিক বন্ধন থাকে না। এমনকি আলাদাভাবে কোনো হত্যাকারীকে চেনার মত স্মৃতিও থাকে না সাপের। অর্থাৎ অন্য একটি সাপের মৃত্যুর গুরুত্ব একটি সাপ আলাদা করে বুঝতে পারে না। আর মানুষ সাপের স্বাভাবিক খাদ্য না হওয়ায় মানুষকে হত্যা করার জন্য সাপ কখনো আলাদাভাবে আক্রমণ করে না। সাপ নিয়ে যেমন ভীতি রয়েছে, তেমনি অনেক দেশে সাপের কদরও রয়েছে। সাপুড়ের বাঁশি বা বীণের শব্দে সাপ নাচে সাপের খেলা দেখানো কোনো ব্যক্তির - যারা এই অঞ্চলে সাপুড়ে হিসেবে পরিচিত - হাতে থাকা লম্বা বাঁশি বা বীণের সুরের তালে তালে সাপ দেহ দোলাচ্ছে. এমন দৃশ্য বাংলা বা হিন্দি সিনেমার পাশাপাশি বাস্তব জীবনেও কেউ কেউ দেখে থাকতে পারেন। তবে এখানে জেনে রাখ��� ভালো যে সাপটি কিন্তু বাঁশি বা বীণার সুর শুনে দেহ দোলাচ্ছিল না। অনেকসময় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে, সাপ তার জন্য হুমকি হতে পারে এমন কোনো বস্তুর নাড়াচাড়া অনুসরণ করে। তাই সাপুড়ের লম্বা বীণা বা বাঁশি সাপের খুব কাছে নাড়াচাড়া করা হলে সাপ ঐ বস্তুটির নাড়াচাড়া অনুসরণ করতে থাকে। আর দেহের বাইরে সাপের কান না থাকায় তারা খুব একটা ভালোভাবে শুনতে পায় না। কিন্তু মাটিতে হওয়া কম্পন খুব ভালো বুঝতে পারে। সাপুড়েরাও সাধারণত ঐ মূলনীতি অনুসরণ করে সাপের মনোযোগ আকর্ষণ করার জন্য ক্রমাগত মাটিতে পা দিয়ে কম্পন তৈরি করতে থাকে। সাপ নিয়ে নানা ধরণের গল্প, আপাতদৃষ্টিতে অদ্ভূত ধারণা, কুসংস্কার বা কিংবদন্তীর যেরকম অভাব নেই ভারতীয় উপমহাদেশের দেশগুলোয়, তেমনি সাপ সম্পর্কে মানুষের আগ্রহেরও অভাব নেই এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে। +text: মনোজ শর্মা আর জামালউদ্দিন সাঈফী তারা ইট-পাটকেল ছুঁড়ছিল আর দোকানপাট ভাংচুর করছিলো। অবস্থা দেখে তখন পালানো ছাড়া মিস্টার শর্মা ও মিস্টার সাঈফীর আর কোনো বিকল্প ছিলো না। কিন্তু তারা দীর্ঘ সময়ের জন্য পালিয়ে যাননি। কিছুক্ষণ পরেই ওই এলাকার আরও লোকজনকে একত্রিত করে নিজেদের গলি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন দাঙ্গাকারীদের। এর মধ্যে পুলিশের কয়েকটি গাড়ীও দেখা গেলো সেখানে। ততক্ষণে দাঙ্গাকারীরা যা করেছে, প্রধান সড়কে তা ছিলো দৃশ্যমান - জানালার ভাঙ্গা গ্লাস, পুড়ে যাওয়া মোটরবাইক ও গাড়ী। পরে পরিচ্ছন্নকর্মীরা এসব সরিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করার কাজ শুরু করে। স্থানীয় অধিবাসী আব্দুল হামিদের অভিযোগ, 'পুলিশই উস্কানি' দিয়েছে দাঙ্গাকারীদের, যারা রড আর লাঠি হাতে উত্তেজক শ্লোগান দিচ্ছিলো। অনেকে বলছেন গুলিও হয়েছে সেদিন, আর বিহার থেকে আসা একজন শ্রমিক - মুবারক নামে একজন - তাতে প্রাণ হারিয়েছেন। জামালউদ্দিন সাঈফী বলেন, ওইদিন দাঙ্গাকারীরা এলাকায় ঢুকতে না পারলেও পরেরদিন অর্থাৎ সোমবার তারা আবার চেষ্টা করে। তবে তিনি বলেন যে ওইদিন তাদেরও যথেষ্ট প্রস্তুতি ছিল। "এলাকার প্রধান লেনগুলো বন্ধ ছিল আর বহু মানুষ একসাথে বসেছিলো," বলছিলেন মিস্টার সাইফী, যার নিজের বাড়িও হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: দিল্লির দাঙ্গা উপদ্রুত জাফরাবাদে যা দেখছেন বিবিসির সংবাদদাতা দাঙ্গার মধ্যে একজন বিচারপতির বদলি নিয়ে শোরগোল মসজিদ�� আগুন দেয়ার যে ঘটনা বিতর্কের কেন্দ্রে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছে যাতে ইন্ধন যোগানোর অভিযোগ উঠছে পুলিশের বিরুদ্ধেও মৌজপুর এলাকাতেই বিজয় পার্ক। আর ওই মৌজপুরই এবারের সহিংসতায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর একটি। মৌজপুর-বাবরপুর মেট্রো স্টেশন এখনো বন্ধ, যদিও অন্য এলাকায় ট্রেন চলছে স্বাভাবিকভাবেই। বিজয় পার্ক এমন একটি এলাকা, যেখানে হিন্দু ও মুসলমানরা পাশাপাশি বাস করে। এলাকার দুটি লেনে মন্দিরও আছে, আবার মসজিদও আছে - ভারতের অন্য অনেক শহরের মতোই। ফলে যে কোনো ধরণের দাঙ্গায় এলাকাটির পরিণাম হতে পারে ভয়াবহ। পবন কুমার শর্মা একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি জানালেন যে স্থানীয়রা একটি কমিটি করেছেন বিশ জন সুপরিচিত ব্যক্তিত্বকে নিয়ে, যাদের মধ্যে হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষই আছে। তারা ঘরে ঘরে গেছেন এবং লোকজনকে কোনো গুজবে কান না দিতে অনুরোধ করেছেন। মিস্টার শর্মা বহু বছর ধরে মন্দিরের একজন ট্রাস্টি। দাঙ্গাকারীরা ওই এলাকায় ঢুকতে চেষ্টা করার একদিন পর মঙ্গলবারে তারা একটি শান্তি মিছিল করেছেন। জুলফিকার আহমেদ পিস কমিটির একজন সদস্য। তিনি বলছেন, "গলির মুখে রাতভর আমাদের এলাকার লোকজন ছিলো। যে গলিতে হিন্দু বেশি সেখানে তাদের দায়িত্ব নিতে বলা হয়েছে। আবার যেখানে মুসলিম বেশি সেখানে মুসলমানদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে"। ধরম পাল একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী এবং এলাকায় এখন খুবই সক্রিয়। তিনি বলেন, এখন পুলিশ যদি নাও থাকে তাহলেও কিছু হতে দেব না। বিজয় নগরে অলিগলিতে জীবন যাত্রা এখন স্বাভাবিক বলে মনে হচ্ছে। হিন্দু সবজি বিক্রেতারা আবার সক্রিয় হয়েছেন। তবে তারা যে এলাকা থেকে আসেন সেখানে তারা দাঙ্গা দেখেছেন অনেকে। তবে গুলিতে তরুণ মুবারকের মৃত্যু মানুষকে বেশ কষ্টই দিয়েছে। আর গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে আছেন সুরেন্দ্র সিং রাওয়াত। মনোজ শর্মা আর জামালউদ্দিন সাঈফী রবিবার বিকেলে তাদের বাড়ির কাছে পাশাপাশি বসেছিলেন। আর ঠিক তখনই মেইন রোডের দিক থেকে একদল সশস্ত্র দাঙ্গাবাজ এগিয়ে আসছিলো বিজয় পার্কের দিকে। +text: নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শতক হাকাঁনোর পর সাব্বির রহমান মাঠের ক্রিকেট নয়, মাঠের বাইরের নানা ঘটনায় বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন সাব্বির রহমান। কিন্তু মাঠের ক্রিকেটে প্রমাণও করেছেন সাব্বির। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এশিয়া কাপে, বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, শহীদ আফ্রিদিদের মাঝে সাব্বির হন টুর্নামেন্ট সেরা ক্রিকেটার। ২০১৯ সালে তুমুল বিতর্কের মাঝে অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা সাব্বির রহমানকে ওয়ানডে দলে নেয়ার সুপারিশ করেন টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে একমাত্র সেঞ্চুরিটি তিনি করেন। সাব্বির রহমানকে অনেকে বাংলাদেশের এক নম্বর টি-২০ খেলোয়াড় হিসেবে বর্ণনা করে থাকেন। সাব্বির রহমানকে নিয়ে যত সংবাদ: সাব্বিরের শাস্তিতে কী শিখবে অন্য ক্রিকেটাররা? সাব্বির-নায়লার বিজ্ঞাপন বন্ধ হলো যে কারণে আমি এসব করতে পারি? ক্রিকেটার সাব্বিরের প্রশ্ন সাব্বির রহমানের যত বিতর্ক ২০১৭ সালের শেষদিকে ও ২০১৮ সালের শুরুর দিকে দর্শক পিটিয়ে সাব্বির রহমান বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়েছিলেন। ২০ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়, সাথে ছয় মাসের জন্য ঘরোয়া ক্রিকেটেও নিষিদ্ধ ছিলেন তিনি। নায়লা নাঈমের সাথে বিজ্ঞাপন বাংলাদেশের ক্রিকেটার সাব্বির রহমান এবং মডেল নায়লা নাঈমের করা একটি টেলিভিশন বিজ্ঞাপন ক্রিকেট বোর্ডের আপত্তির মুখে প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল ২০১৬ সালে। কোমল পানীয়ের এই বিজ্ঞাপনটিতে ক্রিকেটার সাব্বির রহমান মডেল তারকা নায়লা নাঈমের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। ক্রিকেট বোর্ডের একজন কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে সেসময় জানান, বিজ্ঞাপনটি নিয়ে ফেসবুকে যেভাবে সমালোচনা হচ্ছে সেটি তাদের নজরে এসেছে। ক্রিকেট বোর্ডের সেই কর্মকর্তা আরো বলেছিলেন, ক্রিকেটারদের বিজ্ঞাপনে মডেল হতে বাঁধা নেই। কিন্তু সাব্বির রহমান এবং নায়লা নাঈমের বিজ্ঞাপনটি বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। আইসিসি ইভেন্টে সাব্বির রহমান বেশ অভিজ্ঞ বিশ্বকাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলেছেন তিনি ভিডিও পোস্ট করে আচরণের জন্য ব্যাখ্যা ২০১৬ সালের শেষদিকে ব্যক্তিগত কিছু বিষয়ে ভক্তদের কাছে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্যে ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় ক্রিকেটার সাব্বির রহমান। তবে ব্যক্তিগত বিষয় বললেও ঠিক কোন বিষয়ে তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন সেটি স্পষ্ট করেন নি তখন। বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমে খবর বেরিয়েছিল তখন, যে সাব্বির রহমান যা করেছেন তার জন্যে ক্রিকেট কর্তৃপক্ষ বা বিসিবি সেটিক��� 'গুরুতর শৃঙ্খলাবহির্ভূত' কাজ হিসেবে উল্লেখ করেছে। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনা হয়। সাব্বির রহমানের বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ ছিল সেবিষয়ে বিসিবির কোন কর্মকর্তা কিছু বলতে চাননি। তবে জাতীয় দলের এই ব্যাটসম্যান তার ভিডিওতে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে তার ভক্তদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেছেন: "আমি কি এসব করতে পারি?" তবে তার এই কাজের জন্যে তখন সাব্বিরের বিপিএল চুক্তির ৩০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছিল। ২০১৫ বিশ্বকাপে সাব্বির রহমান দলে সাব্বির রহমানের গুরুত্ব কেমন? সাব্বির রহমানের জন্য এই বিশ্বকাপ একটা বড় সুযোগ বলে মানছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের একজন অভিজ্ঞ কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম। "সাব্বির অনেক সুযোগ পেয়েছেন, মাঝেমধ্যে প্রতিদান দিয়েছেন, কিন্তু ওর যতটা দেয়ার ছিল ততটা পারেননি।" "নি:সন্দেহে সাব্বির রহমান দারুণ খেলোয়াড়, এই বিশ্বকাপের পরেও নির্বাচকরা মূল্যায়ণ করবেন তাকে, তার ক্যারিয়ার দীর্ঘায়িত হোক এটাই আমি চাই, কারণ তার সামর্থ্য আছে।" সাব্বির রহমান- দলে ঢোকা নিয়ে বিতর্ক কেন? সাব্বির রহমান তার ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ৬১টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন। যেখানে তার গড় ২৫.৯৩। ওদিকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও ৪১ ম্যাচে তার গড় ২৫.৮৮। ১২২.৫৯ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছেন তিনি। ওয়ানডে ক্রিকেটে তার স্ট্রাইক রেট ৯১.৫১। ওয়ানডেতে ৬১ ম্যাচে ৫টি অর্ধশতক ও ১টি শতক হাকিঁয়েছেন তিনি। এই ধরণের শট খেলায় সাব্বির রহমান পারদর্শী ম্যাচ জেতানো বা বিপর্যয় এড়ানো বেশ কয়েকটি টি-টোয়েন্টি ইনিংস আছে সাব্বির রহমানের, কিন্তু ওয়ানডেতে আসলে পরিচিত রুপে সাব্বির রহমানকে পাওয়া গেছে খুব কম। সাব্বির রহমানকে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ছয় মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তাকে জাতীয় দলে ডাকা হয় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। মূলত অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে সাব্বির রহমানের ব্যাপারে সুপারিশ করেন। যদিও সাব্বির রহমানকে আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে যে শাস্তি দেয়া হয়েছিল তার মেয়াদ ছিল ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত কিন্তু দলের প্রয়োজনে শাস্তি শিথিল করে জানুয়ারি মাসে ঘোষিত দলে তাকে দলে ফেরানো হয়েছে বলে জানায় বিসিবি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাচক মিন���াজুল আবেদীন নান্নু সাব্বির রহমানকে ফেরানোর ব্যাপারে বলেছিলেন, "অধিনায়ক মাশরাফীর পছন্দ ছিল। নিষেধাজ্ঞা কমানোর ব্যাপারটা ক্রিকেট টিম ম্যানেজমেন্টকে জানানো হয়েছে। তারা সে অনুযায়ী কাজ করেছে। পুরোপুরি ফর্মে নেই সাব্বির তবে অভিজ্ঞতা তাকে এগিয়ে রেখেছে।" বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: মধ্যপ্রাচ্যে আরো সেনা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র হিমালয়ের চূড়ায় পর্বতারোহীর এত ভিড় যে কারণে জেএমবিকে নিষিদ্ধ সংগঠন বলে ঘোষণা করলো ভারত গান্ধী-নেহরু পরিবারের রাজনীতি কি এখানেই শেষ? সাব্বির রহমান- তার দ্বিতীয় বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার চার-পাচঁ মাস আগেও নিশ্চিত ছিলেন না আর জাতীয় দলে খেলা হবে কি না। +text: যে চপিং বোর্ডের ওপর মাংস কাটছেন তা পরিষ্কার রাখতে হবে। কিন্তু আসলে ব্যাপারটা তা নয়। পরিষ্কার করতে হবে বাড়ির সেই অংশগুলো - যেখান থেকে ক্ষতিকর মাইক্রোব বা অনুজীব ছড়ায় - তা যদি এমনিতে দেখতে 'পরিষ্কার' দেখায় তা হলেও । এক জরিপে দেখা গেছে: হাত ধোয়া, কাপড়চোপড় এবং বাড়ির বিভিন্ন অংশ ঠিক সময়ে পরিষ্কার করা - এগুলোই বাড়িতে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ রক্ষার জন্য আসল দরকারি জিনিস। কিন্তু প্রতি চারজনের একজনই এগুলো গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন না। হাত ধোয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বাড়িতে স্বাস্থ্যকর পরিবেশন রাখতে কি করা উচিত? প্রথমে আপনার এই তালিকাটি দেখতে হবে যাতে কোন্‌ কাজগুলোর সময় তা থেকে স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে - তা বলা হয়েছে। ১. খাবার রান্না এবং তা হাত দিয়ে নাড়াচাড়া করা। ২. হাত দিয়ে খাবার খাওয়া। ৩. টয়লেট ব্যবহারের পর। ৪. আপনার আশপাশে কেউ যখন হাঁচি-কাশি দিচ্ছে বা নাক ঝাড়ছে। ৫. ময়লা কাপড়ে হাত দেয়া এবং তা ধোয়া। ৬. পোষাপ্রাণীর যত্ন নেয়া। ৭. ময়লা আবর্জনা হাত দিয়ে ধরা এবং তা ফেলার জন্য নিয়ে যাওয়া। ৮. পরিবারের কারো কোন রোগসংক্রমণ হলে তার যত্ন নেয়া। বিশেষ করে এর মধ্যে ১, ৩, ৪, ৬ এবং ৮ নম্বরের ক্ষেত্রে পরিষ্কার করে হাত ধোয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রান্না ঘরের মধ্যে যেখানে আপনি কাঁচা মাংস কাটছেন, মোছামুছির জন্য যে কাপড় বা স্ক্রাবার ব্যবহার করছেন - তার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পোষা প্রাণীর যতন নেবার সময় ব্যাকটেরিয়া ছড়ানোর ঝুঁকি অনেক বেশি অনেক সময় ঘরের মেঝে বা আসবাবপত্র ময়লা দেখায় - কিন্তু এগুলোতে যে মাইক্রোব ব��� অণুজীব থাকে তা তেমন কোন স্বাস্থ্য-ঝুঁকির কারণ নয়। কী ভাবে ব্যাকটেরিয়া দূর করবেন? জিনিসপত্র কাটাকুটির বোর্ড বা থালা-বাটি ধোয়ার জন্য ব্যবহার করুন সাবান-মেশানো হাত-সওয়া গরম পানি। তবে ব্যাকটেরিয়া স্থায়ীভাবে মারতে হলে আপনাকে ব্যবহার করতে হবে ৭০ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের বেশি গরম পানি, এবং তা বেশ খানিকটা সময় ধরে ব্যবহার করতে হবে। পরিষ্কার করার জন্য কি ধরণের সাবান-জাতীয় পদার্থ ব্যবহার করবেন? এগুলো হয় তিন ধরণের। একটা হলো ডিটারজেন্ট, যা সাবান-জাতীয়। এটা পরিষ্কার করে, তেলজাতীয় ময়লা দূর করে কিন্তু ব্যাকটেরিয়া নিধন করতে পারে না। আরেকটা হচ্ছে ডিসইনফেকট্যান্ট - যা ব্যাকটেরিয়া মারতে পারে কিন্তু তৈলাক্ত জায়গা্য় এটা ভালো কাজ করে না। অন্যটি হলো স্যানিটাইজার - এগুলো একই সাথে পরিষ্কার করে এবং জীবাণু নাশ করে। টয়লেট, রান্নাঘর - এগুলো শুস্বাস্থ্যসম্মত রাখাটাই সংক্রমণ ঠেকানোর কার্যকর উপায় বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: স্বাস্থ্য ভালো রাখার কয়েকটি সহজ উপায় ওজন কম বেশি হলে আয়ুও কমে যেতে পারে ব্যাকটেরিয়া কিভাবে মানুষের মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করে? তাই এ জাতীয় প্রোডাক্ট কেনার সময় ভালো করে জেনে নেবেন কী কিনছেন, প্যাকেটের তথ্যগুলো পড়ে নেবেন। 'পরিষ্কার' আর 'স্বাস্থ্যসম্মত' - দুটো যে আলাদা জিনিস তা অনেকেই বোঝেন না ব্রিটেনের রয়াল সোসাইটি ফর পাবলিক হেলথ বা আরএসপিএইচ বলছে, ময়লা, জীবাণু, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, এবং স্বাস্থ্য - এই শব্দগুলোর অর্থের যে পার্থক্য আছে তা অনেক লোকই ঠিকমত বোঝেন না। দুই হাজার লোকের ওপর চালানো এক জরিপের রিপোর্টে বলা হয়, ২৩ শতাংশ লোক মনে করেন যে বাচ্চাদের ক্ষতিকর জীবাণুর সংস্পর্শে আসা দরকার, কারণ তা হলে তাদের রোগ-প্রতিরোধী ক্ষমতা জোরালো হবে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা একটা ক্ষতিকর ধারণা - কারণ এতে শিশুদের দেহে বিপজ্জনক সব সংক্রমণ ঘটে যেতে পারে। তাদের কথা ঘর, টয়লেট, রান্নাঘর - এগুলো শুধু পরিষ্কার নয়, বরং স্বাস্থ্যসম্মত রাখাটাই সংক্রমণ ঠেকানোর কার্যকর উপায়। বাড়িঘর পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত রাখতে গিয়ে অনেকেই বেশি নজর দেন সেই জায়গাগুলোর দিকে - যেগুলো দেখতে 'ময়লা' দেখায়। পরিষ্কার করার সময় সেগুলোর ওপরই আগে হাত দেন তারা। +text: ২০১৫ সালের মে মাসে রোহিঙ্গা ভর্তি একটি নৌযান ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে উদ্ধার করা হয়। (পুরনো ছবি) বিবৃতিতে বলা হয়, শনিবার (২০শে ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা পর্যন্ত নৌযানটিতে কতজন শরণার্থী রয়েছেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তারা বলছেন, নৌকাটির সবাই বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে প্রায় ১০ দিন আগে যাত্রা শুরু করে। ইউএনএইচসিআর বলছে, নৌযানটিতে আটকে পড়া শরণার্থীদের শারীরিক অবস্থা খুবই শোচনীয় এবং তারা মারাত্মক পানিশূন্যতায় ভুগছে। এরইমধ্যে বেশ কয়েক জন প্রাণ হারিয়েছে বলে জানাচ্ছে সংস্থাটি। আর গত ২৪ ঘণ্টায় আরো কয়েক জন প্রাণ হারাতে পারে বলেও আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে। নৌযানটিতে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীরা জানিয়েছে, কয়েক দিন আগেই খাবার এবং পানি শেষ হয়ে গেছে। সপ্তাহ খানেক আগে নৌযানটির ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে সেটি সাগরে ভাসমান অবস্থায় রয়েছে। তবে নৌযানটির অবস্থান সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি সংস্থাটি। এ বিষয়ে ইউএনএইচসিআর এর কর্মকর্তা ক্যাথরিন স্টাবারফিল্ডের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সর্বশেষ সোমবার ভোরের দিকে ওই নৌযানটির সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। নৌযানে থাকা শরণার্থীদের জরুরী ভিত্তিতে সহায়তা দরকার। আরো পড়ুন: তবে আন্দামান সাগরে নৌযানটির অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে সুনির্দিষ্ট কোন দেশের সাথে যোগাযোগ করা না হলেও ওই এলাকার পরিচালিত সব নৌ-কর্তৃপক্ষকে এবিষয়ে জানানো হয়েছে। সেই সাথে তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা জলসীমায় নৌযানটিকে খুঁজতে ও পাওয়া গেলে তাদের উদ্ধার করতে আহ্বান জানানো হয়েছে। এবিষয়ে কক্সবাজার কোস্ট গার্ডের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছে যে, এ ধরণের কোন ঘটনার কথা তারা এখনো জানেন না। ১০ দিন আগে টেকনাফ থেকে কোন নৌযান সাগরে যাত্রা করার তথ্য জানা রয়েছে কিনা সে বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও জানিয়েছেন যে, এ ধরণের কোন তথ্য তাদের কাছে নেই। বিবৃতিতে বলা হয়, শরণার্থী এবং অভিবাসীদের ঝুঁকিপূর্ণ এই সাগর যাত্রা অব্যাহত থাকার বিষয়টি অনুসন্ধান করে তাদের উদ্ধার এবং ফিরিয়ে আনতে দ্রুত ও আঞ্চলিক সম্মিলিত প্রয়াস জরুরী হয়ে পড়েছে। 'মৃত্যুর পরও এই অভিজ্ঞতা ভুলতে পারবো না' জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর আজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, বেশ কিছু রোহিঙ্গা শরণার্থী ভর্তি একটি নৌযান আন্দামান সাগরে আটকা পড়েছে। এসব রোহিঙ্গাকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উদ্ধার করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। +text: নাইরোবির এক ধাত্রী আ-আন মুলিঙ্গে এই কিটের ব্যবহার করে কজন মায়ের জীবন বাঁচিয়েছেন। সমাধান আছে, একটি কনডম সম্বলিত ৫ ডলারেরও কম মূল্যের একটি কিট পারে নতুন এই মায়ের মৃত্যু ঠেকাতে। আর এই সস্তা কিটটিতে রয়েছে একটি কনডম, একটি ক্যাথেটার বা মূত্রনিষ্কাশনযন্ত্র এবং একটি সিরিঞ্জ। এই তিনটি সরঞ্জাম ব্যবহার করেই মায়ের মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব। বিশ্বে প্রতি দুই মিনিটে গর্ভাবস্থায় ও সন্তান জন্মদানের সময় একজন মায়ের মৃত্যু ঘটে। এর সবচেয়ে বড় কারণ হলো ব্যাপক হারে রক্তক্ষরণ। আর এর সমাধান হলো 'ইউবিটি কিট'। কিন্তু এর জন্য ৪০০ ডলারেরও বেশি খরচ করতে হয়। উন্নয়নশীল দেশের অনেক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্যই এটা ব্যয়বহুল। কিন্তু এরই নতুন সংস্করণ এসেছে যা দামে অনেক সস্তা, এর নাম 'ইএসএম ইউবিটি কিট'। একটি কনডম, ক্যাথেটার ও সিরিঞ্জযুক্ত এই কিটটির মূল্য পাঁচ ডলারেরও কম। বর্তমানে আফ্রিকাজুড়ে ধাত্রীদের এই কিট ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কেনিয়ার নাইরোবির এক ধাত্রী আ-আন মুলিঙ্গে বলছেন, "এই পদ্ধতি ব্যবহার করে আমরা কজন মায়ের জীবন বাঁচিয়েছি। সন্তান জন্মদানের সময় কোনো নারীর যখন অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়, তখন আমরা এটা ব্যবহারের পরই রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়ে যায়"। "একটা কনডমের মধ্যে ক্যাথেটার ঢুকিয়ে কনডমের মুখের কাছের অংশটি বেঁধে ফেলি এবং কনডমটি হাত দিয়ে জরায়ুর ভেতরে ঢুকিয়ে দিই। এরপর সিরিঞ্জ দিয়ে ক্যাথেটারে ভেতরে স্যালাইন ঢুকিয়ে ফুলিয়ে দিই কনডমটি। এটি ফুলে ওঠায় জরায়ুর মুখ বন্ধ হয়ে যায় এবং রক্তক্ষরণ থেমে যায়" বলেন নাইরোবির এই ধাত্রী। গত বছর মিস মুলিঙ্গের জীবনে নতুন এক অভিজ্ঞতা হয়েছে। "সন্তান জন্ম দেয়ার পর ওই মায়ের প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল অপসারিত হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই তাঁর প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ শুরু হয়। রক্ত অবিরত পানির মতো গড়িয়ে পড়তে থাকে"। তখন আ-আন মুলিঙ্গের হাতে সময় অনেক কম। "তখন ইএসএম-ইউবিটি কিট ব্যবহারের কথা মাথায় আসে। আমি জরায়ুতে কনডম ঢুকিয়ে ফুলিয়ে দিই। পাঁচ মিনিটের মধ্যে রক্তক্ষরণের মাত্রা কমে যায়। ওই নারী সুস্থ হয়ে সন্তানসহ বাড়ি ফেরেন" - বিবিসিকে বলছিলেন মিস মুলিঙ্গে। বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই কিট দিয়ে ���িকিৎসায় সফলতার হার অনেক। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: অনেক মায়ের জীবন বাঁচাতে কনডম সম্বলিত নতুন এই কিটটি বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোতে মাতৃমৃত্যুর অন্যতম একটি কারণ হলো বাচ্চা জন্ম দেবার পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ। কিন্তু এর সমাধান কী? +text: চীনের প্রথম সম্রাটের একজন দেবতা ছিলেন যিনি গণিত তৈরি করেছিলেন বলে জনশ্রুতি আছে। সেই গণিত বা অংকের শুরুটা হয়েছিল মিসর, মেসোপটেমিয়া এবং গ্রীসে। কিন্তু এসব সভ্যতার পতনের সাথে সাথে গণিতের পরের ধাপের অগ্রযাত্রা ঘটে পশ্চিমের দেশগুলোতে। এদিকে প্রায় নিঃশব্দেই তখন প্রাচ্যের দেশগুলোতেও গণিত পৌঁছে গেছে নতুন উচ্চতায়। সেসময় প্রাচীন চীনে হাজার মাইল দীর্ঘ প্রাচীর নির্মাণ হচ্ছে অংকের হিসাবে-- প্রতি পদক্ষেপ গুণে গুণে। আরো পড়ুন: চীনে উইগর মুসলিম নির্যাতনের ব্যাপারে যা জানা গেছে চীন কি বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ দেশ? বাংলাদেশকে নিয়ে চীন-ভারত দ্বন্দ্ব: নেপথ্যে কী? হারেম ব্যবস্থার লক্ষ্য ছিল মর্যাদাশীল নারীর গর্ভ থেকে যেন সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকার আসে। দেশটিতে অংক এত জরুরী ছিল যে সাম্রাজ্যের কার্যক্রম কি আদালতের বিচারিক কার্যক্রম, তারও ভিত্তি ছিল গণিত বা অংক। গাণিতিক ভালবাসার হিসাবনিকেশ ক্যালেন্ডার ও গ্রহ-নক্ষত্রের গতিবিধি দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হত সম্রাটের সকল সিদ্ধান্ত, এমনকি তার দিন ও রাতের কর্মকাণ্ডও নির্ধারিত হত এর দ্বারা। সম্রাটের উপদেষ্টারা নতুন এক পদ্ধতি বের করেছিলেন, যার মাধ্যমে নির্ধারিত হতো হারেমের বিপুল সংখ্যক নারীর সঙ্গে সম্রাটের রাত্রিযাপনের পালাক্রম। কী সেই পদ্ধতি? এই পদ্ধতির মূল ব্যপারটি ছিল গাণিতিক হিসাব যাকে বলা হতে 'জ্যামিতিক ক্রমবৃদ্ধি'। কিংবদন্তী আছে, ১৫ রাতের ব্যবধানে সম্রাটকে ১২১ জন নারীর সঙ্গে রাত্রিযাপন করতে হবে। তার ক্রম নির্ধারিত হত এভাবে: * সম্রাজ্ঞী * তিনজন ঊর্ধ্বতন সঙ্গিনী * নয়জন পত্নী * ২৭জন উপপত্নী এবং * ৮১জন দাসী প্রতিটি দলে নারীর সংখ্যা তার আগের স্তরের নারীদের তিন গুণ। এর ফলে গাণিতিক হিসাব করে সহজেই একটি রোটা বা তালিকা করে ফেলা যেত যে ১৫ রাতের মধ্যে সম্রাট হারেমের প্রতিজন নারীর সঙ্গে রাত্রিযাপন করছেন। 'রাজসিক উদ্যম' প্রথম রাত্রি নির্ধারিত ছিল সম্রাজ্ঞীর জন্য। এরপর পালাক্রমে আসতেন ঊর্ধ্বতন সঙ্গিনী এবং পত্নীরা। প্রাচীন চীনে বিশ্বাস করা হত যে প্রতিটি সংখ্���ার মহাজাগতিক গুরুত্ব আছে। উপ পত্নীদের তালিকা অনুযায়ী পছন্দ করা হতো, একেক রাতে নয়জন করে। সর্বশেষ নয় রাতে পালা করে ৮১ জন দাসীর সঙ্গে রাত্রিযাপন করতেন সম্রাট। তালিকায় এটা অবশ্যই নিশ্চিত করা হত যে, মর্যাদায় উচ্চতর অবস্থানে থাকা নারীদের সঙ্গে সম্রাট পূর্ণ-চাঁদের কাছাকাছি সময়ে রাত কাটাবেন। এর মাধ্যমে সম্রাটের উত্তরাধিকার অর্থাৎ তার সন্তান-সন্ততি যেন মর্যাদাশীল নারীর গর্ভে জন্ম নেয় সেটি নিশ্চিত করা হতো। এভাবে সম্রাটের শয্যার রুটিনেই কেবল গণিত নয়, সাম্রাজ্যের বংশ পরম্পরাও সৃষ্টি হত গাণিতিক হিসেব নিকেশ অনুযায়ী। চীনা সাম্রাজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রেও গণিত এক বিরাট প্রভাব রেখেছিল। গণিত প্রীতি চীন ছিল এক বিশাল ও ক্রমবর্ধনশীল সাম্রাজ্য, যেখানে আইনকানুন খুব কড়া ছিল। ব্যাপক কর দিতে হত নাগরিকদের। চীনের প্রাচীর নির্মান হয়েছিল গাণিতিক সংখ্যাক্রম মেনে। এছাড়া ওজন, মাপজোক আর মুদ্রার প্রচলন ছিল। পশ্চিমের দেশগুলোর এক হাজার বছর আগেই প্রাচীন চীনে দশমিকের ব্যবহার ছিল এবং সমীকরণের সমাধানে তা ব্যবহৃত হত। পশ্চিমের দেশগুলোতে যা উনিশ শতকের শুরুর আগ পর্যন্ত দেখা যায়নি। কিংবদন্তী জনশ্রুতি আছে, চীনের প্রথম সম্রাটের একজন দেবতা ছিলেন, খ্রিষ্টপূর্ব ২৮০০ সালে যিনি গণিত তৈরি করেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, প্রতিটি সংখ্যার মহাজাগতিক গুরুত্ব আছে। এমনকি আজকের চীনেও সংখ্যা তত্ত্বের এই গুরুত্বে বিশ্বাস করেন চীনারা। বিজোড় সংখ্যাকে পুরুষ আর জোড় সংখ্যাকে নারী হিসেবে ভাবা হয়। চার সংখ্যাটিকে এড়িয়ে যাওয়া হবে যেকোনো মূল্যে। আট সংখ্যাটি সৌভাগ্য নিয়ে আসে সবার জন্য। প্রাচীন চীনারা সংখ্যার ছক দিয়ে বিভিন্ন ধরণের খেলা যেমন সুডোকু তৈরি করেছিল। ষষ্ঠ শতকে নক্ষত্রের গতিবিধি নির্ণয় করে চীনা জ্যোতির্বিদ্যা এই গাণিতিক হিসাবে উপরেই নির্ভর করতো। এমনকি বর্তমানে যে ইন্টারনেটের বিভিন্ন ক্রিপ্টোগ্রাফি বা সংকেত-লিপি লেখা হয়, তার ভিত্তিও এই গণিত। চীনে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সেতু সময়ের হিসাব বের করা থেকে সাগরে নৌচালনা করা - প্রাচীন সভ্যতার বিকাশের সময় প্রতিটি ক্ষেত্রেই মুখ্য ছিল নির্ভুল গাণিতিক হিসাব। +text: বিবিসি লাইভ! এই উপলক্ষে বিবিসি বাংলা প্রকাশ করেছে একটি তথ্যবহুল স্মরণিকা "বিবিসি লাইভ!" এই নামে। বিবিসি লাইভ! ডাউনলোড করতে এই লিংক�� ক্লিক করুন। নানা ঘটনায় সমৃদ্ধ এই প্রতিষ্ঠানের চলার পথে যেসব সাংবাদিক ও কর্মী এই সংস্থায় কাজ করে গেছেন বা করছেন তারা এই স্মরণিকায় তুলে ধরেছেন তাদের অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার থেকে খবর সংগ্রহের পেছনের নানা কাহিনি। থাকছে রেডিও দিয়ে যাত্রা শুরু করে কীভাবে বিবিসি বাংলা এখন টেলিভিশন আর ডিজিটাল সাংবাদিকতার নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। কীধরনের চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে এগিয়েছে বিবিসি বাংলা তার সম্পাদকীয় নীতি আর সাংবাদিকতার মূল্যবোধ নিয়ে তা ছড়িয়ে রয়েছে সচিত্র এই স্মরণিকার পাতায় পাতায়। বিবিসি বাংলা ১১ই অক্টোবর ২০১৬য় পূর্ণ করেছে তার ৭৫ বছরের যাত্রা। +text: বাংলাদেশের পাসপোর্ট। গত শনিবার নদী আক্তার নামের মেয়েটির লাশবাহী কফিন ঢাকায় পৌঁছায়। মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে বলে দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এর আগেও ১৪ বছর কিশোরীর বয়স বাড়িয়ে বিদেশে কাজ করতে পাঠানো হয়। দেড় বছর যেতে না যেতেই তাকেও ফিরতে হয় লাশ হয়ে। সৌদি আরবে গৃহকর্মী হিসেবে পাঠাতে হলে বয়স ন্যূনতম ২৫ বছর হতে হয়। এই বয়স যাচাই করা হয় প্রার্থীর জন্ম নিবন্ধন সনদ, জাতীয় পরিচয় পত্র বিশেষ করে পাসপোর্ট তৈরির সময় পুলিশ ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে। তারপরও এতো অল্পবয়সী মেয়েরা কিভাবে দেশের বাইরে শ্রমিক হিসেবে যেতে পারছে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে এই নারীদের বয়স বাড়িয়ে বিদেশ পাঠানো নতুন কোন ঘটনা নয়। নদী আক্তারকে বয়স বেশি দেখিয়ে বিদেশে পাঠানো হয়। বাংলাদেশে জন্ম নিবন্ধন এখনও সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে না হওয়ায় বয়সে হেরফের করার সুযোগ থাকছে যা কারণে পাসপোর্টেও ভুল তথ্য যুক্ত হয়ে যাচ্ছে বলে জানান বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আইয়ুব চৌধুরী। সাধারণত পাসপোর্টের ফর্মে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তিকে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক হলে জন্ম নিবন্ধন সনদের নম্বর দিতে হয়। ফর্মে লেখা নম্বরের সাথে পরিচয়পত্র বা সনদের মিল থাকলেই পাসপোর্ট ইস্যু করা যায়। এরপর প্রার্থীর বয়স, ঠিকানাসহ অন্যান্য তথ্য যাচাই করা হয় পুলিশ ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দিলেই সেই পাসপোর্ট প্রিন্ট করা যায়। বাংলাদেশে জন্ম নিবন্ধন পদ্ধতিটি এখনও পুরোপুরি ডিজিটালাইজড করা যায়নি। সাধারণত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এসব সনদের অনুমোদন দিয়ে থাকে। সেখানেই তথ্য পাল্টে দেয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। মি. সরকার বলেন, "যদি স্থানীয় সরকার কাউকে ভুল তথ্যের জন্ম সনদ দিয়ে দেয়। কেউ যদি একাধিকবার নিজের ইচ্ছামত বয়স বদলে সার্টিফিকেট তুলতে পারে তখন কিছু করার নাই। পাসপোর্টেও সেই ভুলটাই যাবে।" সম্প্রতি বহু নারী শ্রমিক দেশে ফিরে এসেছেন। গত ৩০শে অক্টোবর নদী আক্তারের লাশ গ্রহণ করে তার পরিবার। সৌদি আরব পাঠানোর সময় নদীর বয়স তার মা ১৭ বছর বলে দাবি করলেও পরিবারের কাছে থাকা জন্ম নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী নদীর জন্ম ২০০৭ সালে। সেই হিসেবে এখনও নদী আক্তারের ১৩ বছর পূর্ণ হয়নি। মেয়েটির স্থায়ী ঠিকানা কুমিল্লায় দেয়া থাকলেও এই জন্ম সনদ তোলা হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জোন -২ থেকে। স্কুলে ভর্তির উদ্দেশ্যে মেয়ের বাবা এই সার্টিফিকেট তৈরি করেছিল বলে জানান মেয়েটির মা বিউটি বেগম। তবে মেয়েটির প্রকৃত বয়স ১৩ হোক বা ১৭- অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার কারণে তার জাতীয় পরিচয়পত্র থাকার কথা না। জন্ম নিবন্ধন সনদ দেখিয়েই তার পাসপোর্ট করানোর কথা। কিন্তু পাসপোর্টে নদী আক্তারের বয়স বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে ২৭ বছর। এজন্য পাসপোর্ট অফিসে জমা দেয়া হয়েছে নতুন আরেকটি জন্ম সনদ। সেখানে জন্ম দেখানো হয়েছে ৮ই সেপ্টেম্বর ১৯৯৩। সনদটি ইস্যু করা হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের জোন-৪ থেকে। সৌদি আরবে গৃহকর্মি হিসেবে যাওয়া বাংলাদেশের নারী শ্রমিকদের দেশে ফেরার প্রবণতা বাড়ছে। একাধিক ভুল তথ্য দিয়ে জন্ম নিবন্ধন সনদ ইস্যু করার কারণেই পাসপোর্টে ভুল যুক্ত হচ্ছে বল জানান মি. চৌধুরী। এরমধ্যে বাংলাদেশে প্রতিদিন ২৫ হাজার পাসপোর্ট প্রিন্ট হওয়ায় এরমধ্যে কিছু কিছু পাসপোর্টের তথ্যের গড়মিল ধরা কঠিন হয়ে যায় বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, "প্রতিদিন ২৫ হাজার পাসপোর্টের মধ্যে ১ শতাংশেও যদি সমস্যা থাকে তাও ২৫টা পাসপোর্ট হয়। সেই ভুলগুলোই সামনে আসছে। আমাদেরও মেয়েটিকে দেখে তার প্রকৃত বয়স ধারণা করা উচিত ছিল। এমন কিছু অনিচ্ছাকৃত ভুল হচ্ছে।" জন্ম নিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টের তথ্য একই সার্ভারের আওতায় চলে এলে তথ্যের এই বিভ্রান্তি দূর করা সম্ভব বলে জানান তিনি। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে কুলসুম নামে এক কিশোরীর লাশও সৌদি আরব থেকে ফেরত এসেছিল। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার সনদ অনুযায়ী তার বয়স ১৪ বছর হলেও পাসপোর্টেও বয়স দেখানো হয় ২৭ বছর। কিন্তু সৌদি আরবে ২৫ বছরের কম বয়সী মেয়েদের পাঠাতে নিষেধাজ্ঞা থাকায় রিক্রুটিং এজেন্সি তার বয়স বেশি দেখিয়ে পাসপোর্ট তৈরি করে। কিন্তু দেড় বছরের মাথায় দুটি মেয়েকেই লাশ হয়ে দেশে ফিরতে হয়। এ ব্যাপারে নদী আক্তারের মা বিউটি বেগম বলেন, "আমার মেয়ের অরিজিনাল বয়স ১৭ বছর ছিল, ওরা ২৭ বছর লেইখা পাঠাইসে। যে অফিসের মাধ্যমে আমার মেয়ে বিদেশে গেসে ওরাই জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট করসে। বয়স বাড়াইসে। সব ওরাই করসে।" আরো পড়তে পারেন? সৌদি আরব থেকে শ্রমিক ফেরত, চিন্তিত দূতাবাস 'বাঁচতে হলে লাফ দেয়া ছাড়া উপায় কি'? সৌদি আরব থেকে শ্রমিক ফেরত, চিন্তিত দূতাবাস এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরগুলোর জবাবদিহিতা না থাকা এবং সৌদি আরবের দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে তথ্যে গড়মিল করার এই প্রবণতা ঠেকানো যাচ্ছে না বলে জানান রামরুর চেয়ারম্যান তাসনিম সিদ্দিকী। তিনি বলেন, "সৌদি আরব নারীদের কাজের জন্য আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ। আর কমবয়সী মেয়েদের জন্য তো বটেই। এক্ষেত্রে শুধু রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে মামলা করলে হবে না। বরং এর সঙ্গে প্রশাসনের সবাইকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। এছাড়া সৌদি আরবে যারা এই কম বয়সী মেয়েদের নিয়োগ দিয়েছে। তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা জরুরি।" বাংলাদেশে অপ্রাপ্তবয়স্ক এক কিশোরীকে ২৭ বছর বয়স দেখিয়ে গত বছর সৌদি আরবে পাঠানো হয়েছিল গৃহকর্মী হিসেবে। +text: ফেসবুক ব্যবহার করে ব্যবসা করেন এমন অনেকে অভিযোগ করছেন যে তাদের ব্যবসা মোটামুটি বসে গেছে। আবার অনলাইনে সংবাদ পরিবেশনকারীরা বলছেন, ফেসবুক না থাকার কারণে তাদের পেজে ভিজিটরের সংখ্যা দারুণভাবে কমে গেছে। সরকার অবশ্য বলছে না যে ঠিক কবে বাংলাদেশের ব্যবহারকারীরা আবারো ফেসবুকের সাইটে প্রবেশ করতে পারবেন। যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের আপীলের রিভিউর রায় সুপ্রীম কোর্ট যেদিন ঘোষণা করেছিল, সেই দিন অর্থাৎ গত বুধবার থেকে বাংলাদেশের মানুষ সহজপথে ফেসবুক ব্যবহার করতে পারছেন না। ঐদিন সরকার ফেসবুক সহ জনপ্রিয় কয়েকটি মেসেজিং সাইটে প্রবেশ বন্ধ করতে ইন্টারনেট সার্ভিস দেয়ার প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দেয়। প্রযুক্তিতে দক্ষ কিছু ব্যবহারকারী বিকল্পপথে ফেসবুকে ঢুকতে পারছেন, এমনটা বলা হলেও বেশীরভাগ ব্যবহারকারী একটি সপ্তাহ কাটিয়েছেন ফেসবুক ছাড়া। এদের একজন আফরিনা জোহা উপমা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পরীক্ষা দেয়া উপমা দিনের একটা লম্বা সময় কাটান ফেসবুকে। "ফেসবুকে থাকে কোন না কোনভাবে মন ভালো হয়ে যায়, এটা বন্ধ থাকায় মনটাও ভালো থাকছে না।" বলেন তিনি। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের যেসব পরিসংখ্যান পাওয়া যায়, তাতে দেখা যাচ্ছে প্রায় এক কোটি সত্তর লক্ষ বাংলাদেশীর নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। আর এদের প্রায় অর্ধেক বয়স ১৮ থেকে ৩০-এর কোঠায়। আর এদের টার্গেট করে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডও চালাচ্ছে। বিদেশী পণ্য ডট কম নামের একটি প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে নানা রকম পণ্য, যার মধ্যে রয়েছে ইলেকট্রনিকস ও পোশাক। এর বিপনন কর্মকর্তা মুরতাদা বিন আল-রাধিন বলছেন, তাদের প্রায় শতভাগ অর্ডার আসে ফেসবুকের মাধ্যমে । তিনি বলছেন, "ফেসবুকের মাধ্যমে যে ব্যবসাটা হতো তা এখন একদম শূন্যে নেমে এসেছে।" বেশীরভাগ ব্যবহারকারী ফেসবুকে ঢুকতে না পারার থাকার কারণে সমস্যায় পড়েছে অনলাইন গণমাধ্যমগুলোও। বেসরকারী টেলিভিশন এনটিভি’র অনলাইনের দায়িত্বে রয়েছেন ফখরুদ্দিন জুয়েল, তার কথায়, "আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি আমাদের ট্রাফিক কমে যাচ্ছে।" খুব সহজ একটি যোগাযোগ মাধ্যম হওয়ার কারণে বাংলাদেশে ফেসবুকের ব্যবহার খুব দ্রুত বেড়েছে। এর ওপর নির্ভরতাও বেড়েছে। তবে কৃষিপণ্যের ওয়েবসাইট আমার দেশ আমার গ্রামের প্রধান নির্বাহী সাদেকা হাসান পরামর্শ দিচ্ছেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্যে ফেসবুকের ওপর নির্ভরতা কমানো দরকার। কোন রকম বিকল্প পথে না গিয়ে বাংলাদেশের মানুষ আবার কবে ফেসবুক ব্যবহার করতে পারবে, সে বিষয়টি এখনো পরিস্কার নয়। সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আজ বলেছেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে, ফলে শিগগির ফেসবুক খুলে দেয়া হবে। কিন্তু এই শিগগির কত তাড়াতাড়ি, সে সম্পর্কে অবশ্য তিনি কোন ধারণা দেননি। বাংলাদেশে সরকারী নির্দেশে এক সপ্তাহ ধরে ফেসবুক বন্ধ রাখার কারণে জনপ্রিয় এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহারকারীদের অনেকে এখন আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হতে শুরু করেছেন। +text: ইউক্রেনে রুশ পন্থী সেনাবাহিনী এই ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটলো যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওমাবা রাশিয়াকে হুশিয়ারি দিয়ে বলেছে ইউক্রেনের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিলে নতুন নিষেধাজ্ঞার মুখে পরতে হবে রাশিয়াকে। ইউক্রেনের একটি টেলিভিশনে দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেছেন রুশ পন্থী সৈন্যরা ইউক্রেনের নৌবাহিনীর একটি জাহাজ দখল করে নিয়েছে। চেরকাস্সি নামে জাহাজটি শুক্রবার সিভাসটোপোলে নোঙর করেছিল। ক্রাইমিয়াতে ইউক্রেনের সর্বশেষ জাহাজ দখলের ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটলো যখন পশ্চিমা বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো রাশিয়ার ব্যাপারে আরও নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ব্যাপারে হুশিয়ারি দিয়েছে। নেদারল্যান্ডস এর হ্যেগ এ অনুষ্ঠিত জি সেভেন সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওমাবা রাশিয়াকে হুশিয়ারি দিয়ে বলেছে ইউক্রেনের ব্যাপারে আর কোন পদক্ষেপ নিলে নতুন নিষেধাজ্ঞার মুখে পরতে হবে রাশিয়াকে। এক সংবাদ সম্মেলনে মি. ওবামা বলছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলো সব রকমের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে প্রস্তুত রয়েছে যেটা রাশিয়ার অর্থনীতিকে চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তিনি ইউক্রেনকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আওভান জানিয়েছেন। রাশিয়াকে বাদ দিয়ে জি-সেভেনের দেশগুলোর নেতারা এ বছর দেশটির অলিম্পিক ভেন্যু সোচিতে পরিকল্পিত জি-এইট বৈঠক না করে শুধুমাত্র নিজেদের একটি সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রাশিয়া অবস্থান পরিবর্তন না করা পর্যন্ত জি-এইট বৈঠকে যোগও দেবেন না তারা। এর আগে ক্রাইমিয়ায় রাশিয়ার সেনারা সর্বশেষ ইউক্রেইন নৌঘাঁটি দখলের পর সেখান থেকে সশস্ত্র বাহিনী সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয় কিয়েভ সরকার। ইউক্রেন বলছে রাশিয়ার সৈন্যরা ক্রাইমিয়াতে ইউক্রেনের সর্বশেষ যুদ্ধজাহাজটি দখল করে নিয়েছে। +text: সাকিব - বাংলাদেশের 'ওয়ান ম্যান শো' বিশ্বকাপে দারুণ খেলে আলোচনায় এসেছেন সাকিব আল হাসান ও বিশটি উইকেট নিয়ে বোলারদের তালিকায় আছেন মুস্তাফিজুর রহমানও। তারপরেও মাত্র তিন ম্যাচের জয় নিয়ে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে বাংলাদেশ। ক্রিকেট কোচ হিসেবে সুপরিচিত নাজমুল আবেদীন ফাহিম মনে করেন প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। তিনি বলছেন, "আরেকটু ভালো করতে পারতাম। ব্যাটিং নিয়ে স্বস্তিতে ছিলাম । কিন্তু বোলিং যথেষ���ট দুর্বল ছিলো। গত কয়েক বছরেও এমন দুর্বল মনে হয়নি বাংলাদেশের বোলিং। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কিছু ক্যাচ মিস হয়েছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়েছে ওপেনিং স্লটে বোলিং নিয়ে"। মি. ফাহিম বলেন বিশ্বকাপের আগে সাকিব আল হাসানের মতো যারা ভালো প্রস্তুতি নিয়েছে তারা ভালো করেছে। যদিও বিশ্বকাপের আগে খেলার প্রস্তুতির বাইরে বিয়ে ও ব্যক্তিগত জীবনের ব্যস্ততা নিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। তারপরও ছশোর বেশি রান ও এগারটি উইকেট নিয়ে সাকিব যেমন তেমনি ২০ উইকেট পাওয়া মুস্তাফিজও কিছুটা নজর কেড়েছেন। এর বাইরে মুশফিকুর রহিম ছাড়া অন্য খেলোয়াড়রা কতটা অবদান রাখতে পেরেছেন তা নিয়েও বিরাট প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আরও পড়ুন: ক্রিকেট বিশ্বকাপ: মাঠে কোন ক্যামেরা কী কাজ করে? বাংলাদেশকে 'চিবিয়ে খাব' বিজ্ঞাপন নিয়ে ভারতে বিতর্ক ডেথ ওভার বোলিংয়ে নজর কেড়েছেন মুস্তাফিজ সাবেক ক্রিকেটার রকিবুল হাসান বলছেন, লম্বা ট্যুরের ধকল নিতে পারেনি বাংলাদেশ। "সাকিবের সাথে মুশফিক ভালো করেছে। মাহমুদুল্লাহ, লিটন একটি করে ম্যাচে ভালো করেছে। কিন্তু লম্বা জুটি আর তেমন একটা দেখা যায়নি। হয়তো লম্বা ট্যুরের কারণে মনস্তাত্ত্বিক একটা বিষয় কাজ করেছে। তামিম ইকবালের মতো খেলোয়াড় মোটেও নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি"। বাংলাদেশের 'ওয়ান ম্যান শো' সাকিব সিনিয়র খেলোয়াড়দের ব্যর্থতার পাশাপাশি জুনিয়র খেলোয়াড়দের ধারাবাহিকভাবে জ্বলে ওঠার চেষ্টার অভাব নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে। আটটি ম্যাচ খেলে দুশোর বেশি রান করতে পেরেছেন সাকিবসহ দলের মাত্র চারজন ব্যাটসম্যান। আবার পারফর্ম না করে দলে জায়গা ধরে রাখায় কথা হচ্ছে স্বয়ং অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্ত্তুজাকে নিয়েও। সাকিব ও মুস্তাফিজ মিলে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন তিনবার। এর বাইরে দশটির বেশি উইকেট পেয়েছেন শুধু সাইফউদ্দিন। তামিম ইকবাল। বিশ্বকাপে সমর্থকদের হতাশ করেছেন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সাবেক কোচ পারভিন নাছিমা নাহার পুতুল বলছেন ব্যক্তিগত অর্জন, ব্যাটিং ও বোলিংয়ে ওপেনিং জুটির ব্যর্থতা আর বাজে ফিল্ডিং বাংলাদেশকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে দেয়নি। "ওয়ার্ল্ড কাপ মানে বিরাট মানসিকতার বিষয়। ফিল্ডিংয়ে এমন দুর্বলতা সম্পর্কে আগেই দৃষ্টি দেয়া উচিত ছিলো। সিনিয়রদের প্রতি গুরুত্ব বেশ��� হয়ে গিয়েছিলো। মুস্তাফিজ শেষ দিকে ভালো খেললেও তাতে ম্যাচ উইন করা যায়নি। ওপেনিং জুটি রান করলে মিডল অর্ডার সহজেই ম্যাচ বের করে নিয়ে আসতে পারতো"। প্রথম ম্যাচে তিনশর বেশি রান করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১ রানে হারানোর পর নিউজিল্যান্ডের সাথে লড়াই করেও হেরে যাওয়া সমর্থকদের শুরুতে দারুণভাবে আশাবাদী করে তুলেছিলো। তারপর টুর্নামেন্ট যত গড়িয়েছে, আশাহত হতে হয়েছে তাদের। একমাত্র সাকিব আল হাসানের অবিস্মরণীয় পারফরমেন্সকে পুরো টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের ওয়ান ম্যান শো হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন সাবেক ক্রিকেটার রকিবুল হাসান। বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলে প্রথম বারের মতো এ ধরণের টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছিলো বাংলাদেশ। সেই ট্যুরের আগে বিশ্বকাপে সেমিফাইনালের খেলার যে লক্ষ্যের কথা বলেছিলো বাংলাদেশ দল তা অর্জনে ত্রিদেশীয় ঐ শিরোপা আরও আশা যুগিয়েছিল। +text: চীনের কয়েকটি শহরে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ বাংলাদেশে ফিরে আসার আগ্রহ প্রকাশ করলেও দেশটির সরকার সেখানকার সব ধরণের গণপরিবহনে চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় এক প্রকার আটক অবস্থায় দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের। তবে ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সব ধরণের সহযোগিতা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ দূতাবাস। করোনাভাইরাস সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে চীনা মানচিত্রের কেন্দ্রে থাকা হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানের বাসিন্দারা। এছাড়া উহানের আশেপাশের ১৩টি শহরে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি। যদি বাংলাদেশে ফেরার কোন সুযোগ থাকতো.. এরইমধ্যে কয়েকজনের মৃত্যুর ঘটনায় চাপা আতঙ্কের মধ্যে আছেন সেখানে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তাদের একজন শামিমা সুলতানা, যিনি গত চার বছর ধরে তার দুই সন্তান নিয়ে উহান শহরে বসবাস করছেন। প্রতিনিয়ত আতঙ্কের মধ্যে তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসতে চাইলেও শহরটির সব গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সেটাও সম্ভব হচ্ছে না। "খুবই উদ্বেগ, আতঙ্ক আর মেন্টাল প্রেশারের মধ্যে আছি। বাজার করার জন্যও বাইরে যেতে পারছি না। যে খাবার দাবার আছে, সেটা শেষ হলে কি করবো জানি না। এখন যদি বাংলাদেশে ফেরার কোন সুযোগ থাকতো আমি এক মুহূর্তও এদেশে থাকতাম না। কিন্তু বাস, প্লেন, ট্রেন সবই বন্ধ। ফেরার কোন পথ নেই।" আরও পড়তে পারেন: মাস্ক পরে কি ভা��রাসের সংক্রমণ ঠেকানো যায়? চীনে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪১ সদা পরিবর্তনশীল করোনাভাইরাস কতটা বিপজ্জনক? চীনে পড়তে যাওয়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের সতর্ক হয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কীভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে শুরুতে এমন উদ্বেগের মধ্যে ছিলেন মোহাম্মদ শাকিল আহমেদও। তিনি উহানের একটি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তার মতো উহান শহরে বসবাসরত অন্যান্য শিক্ষার্থীরা শুরুতে ভাইরাসের আতঙ্কে থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে তাদেরকে সব ধরণের সহযোগিতা দেয়ার কথা আশ্বাস দেয়ায় উদ্বেগ কিছুটা কমেছে। কিন্তু চীনা সরকারের নির্দেশনা মানতে গিয়ে এক রকম আটক অবস্থায় সতর্ক হয়ে চলতে হচ্ছে তাদের। মি. আহমেদ বলেন, "দূতাবাস থেকে আর ইউনিভার্সিটি থেকে সব সময় আমাদের সাথে যোগাযোগ রাখছে। ইউনিভার্সিটি থেকে বলেছে যেন আমরা প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হই। সব সময় যেন মাস্ক পরি, তারা ওই মাস্ক দিয়েছে। বারবার হাত ধুতে বলেছে, প্রচুর পানি খেতে বলেছে। মানে যতভাবে সতর্ক থাকা প্রয়োজন - তারা রুমে রুমে এ সংক্রান্ত নোটিশ দিয়ে গেছে।" শিক্ষার্থীরা যেন তাদের প্রয়োজনীয় বাজার সেরে নিতে পারে এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটা বাস সপ্তাহে দুই দিন এই শিক্ষার্থীদের ডর্মেটরি থেকে পাশের সুপার শপে নিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে। এছাড়া কোন শিক্ষার্থীর যদি, জ্বর, ঠান্ডা, কাশি, সর্দি বা বুকে ব্যথা হয়- যেগুলো কিনা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ। তাহলে সাথে সাথে এই তথ্য ডর্মেটরির সুপারভাইজারকে জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মি. আহমেদ বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সার্বক্ষণিক খোঁজ নেয়া হচ্ছে যে আমরা ঠিক আছি কিনা। তারপরও যদি কারও মধ্যে করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখা যায় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুলেন্স করে আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করবে। আসলে সাবধানে থাকা আর নির্দেশনা মেনে চলা ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় নেই।" করোনাভাইরাসের কারণে চাপা আতঙ্কের মধ্যে আছে সাধারণ মানুষ। চীনের বাংলাদেশ দূতাবাস কিভাবে সাহায্য করছে চীনে বসবাসরত প্রায় তিন হাজার বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে প্রায় তিনশ জনের বসবাস উহান এবং এর আশেপাশের শহরগুলোয়। করোনাভাইরাসের এই বিস্তারকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে মোকাবিলার কথা জানিয়েছে চীনের বাংলাদেশ দূতাবাস। বর্তমান পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে উহানে বসবাসরত দুই শতাধিক বাংলাদেশি ইতোমধ্যে এক হয়ে তাদের সমস্যাগুলোর কথা দূতাবাসকে অবহিত করেছে। দূতাবাসের পক্ষ থেকেও সব বাংলাদেশি নাগরিককে জরুরি প্রয়োজনে যেকোনো সহায়তা চাওয়ার জন্য সপ্তাহে ২৪ ঘণ্টার একটি হটলাইন নম্বরে যোগাযোগের জন্য বলেছে। বিশেষ করে কেউ অসুস্থ হলে দূতাবাসের পক্ষ থেকেই তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া হবে। যদিও এখন পর্যন্ত কোন বাংলাদেশি বা বিদেশি নাগরিকের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। মানুষের আতঙ্ক দূর করতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে দূতাবাস যৌথভাবে কাজ করছে বলে জানান চীনে বাংলাদেশি দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অফ মিশন মাসুদুর রহমান। "আমরা বুঝতে পারছি যে, উহানের বাংলাদেশিরা যে একপ্রকার আটক হয়ে অসহায় অবস্থায় আছে। চীনা সরকার এখনও যেহেতু কাউকে সরিয়ে নেয়ার কোন নির্দেশনা দেয়নি, তাই আমরা সেটা করতে পারছি না। এখন চীনা স্বাস্থ্যসেবা অধিদফতর বা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে যে পরামর্শ দিচ্ছে সেগুলো মেনে চলতে বলছি।" "এছাড়া আমরা যে হটলাইন নম্বর চালু করেছি, সেখানে প্রতিদিন প্রচুর ফোন আসে। কারো বাসায় বাজার নেই, সে কিভাবে যাবে। কিন্তু কেউ আক্রান্ত হয়েছে এমন খবর আমরা পাইনি।" বলেছেন মি. রহমান। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে উহানের সব গণপরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। চীনা মন্ত্রণালয়ের সাথে দূতাবাসগুলো কিভাবে কাজ করছে তবে চীনা নববর্ষের কারণে দেশটির সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে এক ধরণের চ্যালেঞ্জের মুখে আছেন বাংলাদেশের দূতাবাস কর্মকর্তারা। এমন অবস্থায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, চীনে থাকা দূতাবাসগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে একজন কর্মকর্তাকে নিযুক্ত করেছে। এই ভাইরাসকে ঘিরে বিদেশি নাগরিকরা তাদের আতঙ্ক বা অভিযোগগুলোর কথা তাদের দেশের দূতাবাসকে অবহিত করছেন। এবং দূতাবাস সেগুলো জানাচ্ছে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তাকে। তিনি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান যেমন বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য সেবা অধিদফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছ���ন। চীনের কয়েকটি শহরে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। +text: বিবিসির ১০০ নারীর তালিকায় স্থান ২০১৮ সালে স্থান পাওয়া কয়েকজন সীমা সরকার সীমা সরকার যিনি তার ১৮ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী ছেলেকে কোলে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রে যান। এই ছবি সাড়া জাগায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মায়ের এমন ভালোবাসায় মুগ্ধ হয় অনেকে। প্রতিবন্ধী ছেলেকে পড়াশোনা করানোয় নিগ্রহের শিকারও হয়েছেন সীমা সরকার। স্বল্প আয়ের পরিবারে প্রতিবন্ধী শিশুকে পড়াতে গিয়ে আর্থিক অনটনেও পড়েছেন সীমা সরকার। বাংলাদেশে প্রায় কোন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানেই শারীরিক প্রতিবন্ধীদের চলাচলের জন্য ব্যবস্থা নেই। ছেলেকে কোলে নিয়ে তিন-চার তলা সিঁড়িও বেয়েছেন সীমা সরকার। এই ছবি সাড়া জাগায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মায়ের এমন ভালোবাসায় মুগ্ধ হয় অনেকে। অদম্য মা: প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। নিমকো আলী: ৩৫ বছরের এই নারী সোমালিল্যান্ডের একজন লেখক এবং অ্যাকটিভিস্ট। তিনি নারীদের যৌনাঙ্গ কাটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন। এই কাজের জন্য তিনি পুরস্কৃত হয়েছেন। বুশরা ইয়াহইয়া আলমুটাওয়াকিল: ৪৯ বছরের এই নারী ইয়েমেনের একজন শিল্পী, ফটোগ্রাফার এবং অ্যাক্টিভিস্ট। তিনি যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইয়েমেনের প্রথম নারী পেশাদার ফটোগ্রাফার। তার তোলা ছবি আন্তর্জাতিক পাবলিকেশনে ছাপানো হয়েছে এবং ব্রিটিশ মিউজিয়ামে স্থান পেয়েছে। আলিনা আনিসিমোভা: কিরগিজস্থানের একজন স্টুডেন্ট প্রোগ্রামার। তার বয়স ১৯। তিনি দেশটির মহাকাশ সংক্রান্ত স্কুলের প্রতিনিধিত্ব করেন। তাদের উদ্দেশ্য দেশটির প্রথম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা। ফ্রান্সিস আর্নল্ড: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন অধ্যাপক। তিনি কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়ো-ইন্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োকেমিস্ট্রি পড়ান। এই রসায়নবিদ তার কাজের জন্য ২০১৮ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। উমা দেবী বাদি: উমা নেপালের নাগরিক। তিনি দেশটির বাদি সম্প্রদায়ের। এই সম্প্রদায়কে নেপালে অস্পৃশ্য হিসেবে ধরা হয়। এই উমা দেবী বাদি দেশটির সংসদের সদস্য হয়েছেন। এবং সম্প্রদায় নিয়ে যে একটা মানুষের বিরূপ ধারণা আছে সেটা পরিবর্তনের চেষ্টা করছেন। চেলসি ক্লিনটন: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের মেয়ে তিনি। ৩৮ বছরের এই নারী ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের ভাইস-চেয়ার। তিনি অসংখ্য বই লিখেছেন। তিনি অনেক বিষয়ে কাজ করেছেন যার মধ্যে পরবর্তী প্রজন্মকে নেতৃত্বে আসার জন্য ক্ষমতা প্রদানে সাহায্য করা রয়েছে। জুলিয়া গিলার্ড: জুলিয়া গিলার্ড অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী। জুলিয়া গিলার্ডের বয়স ৫৭। তিনি ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। তিনি এখন নারী এবং শিশুদের শিক্ষা ও নেতৃত্বের বিষয় নিয়ে কাজ করছেন। সাকদিয়াহ মারুফ: ৩৬ বছরের এই নারী ইন্দোনেশিয়ার একজন স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান। তিনি দেশটির প্রথম মুসলিম নারী স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান। তবে তার কাজ মানুষের কৌতুক শুনিয়ে মনোরঞ্জন করা নয়। তিনি তার কাজের মাধ্যমে ইসলামের উগ্রপন্থাকে চ্যালেঞ্জ করেন এবং মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধে কাজ করেন। সাপারাক শাজারিজাদেহ: তিনি ইরানের একজন অ্যাক্টিভিস্ট। ৪৩ বছরের এই নারী প্রকাশ্যে মাথার স্কার্ফ খুলে ফেলেন। ইরানে মেয়েদের জন্য হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। এই কাজের জন্য তাকে ২০ বছরের জেল খাটতে হচ্ছে এখন। জিং যাও: চীনের একজন উদ্যোক্তা তিনি। ৩৫ বছরের এই নারী একটি অনলাইন নেটওয়ার্ক চালান। যেখানে নারীরা তাদের শরীর সম্পর্কে জানতে পারেন এবং যৌন ইচ্ছা সম্পর্কে আলোচনা করেন। আরো পড়ুন: তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্স: আইনে কী আছে? তাজমহলে পূজা এবং নামাজ পড়া নিয়ে বিতর্ক পুরুষ সমকামিতার বর্ণনা দেওয়ায় লেখকের জেল সীমা সরকার যিনি তার ১৮ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী ছেলেকে কোলে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রে যান। এই ছবি সাড়া জাগায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে আরো যারা এই তালিকায় স্থান পেয়েছেন তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের কথা উল্লেখ করা হল। +text: কোটার কারণে মেধাবীরা সুযোগ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করছেন বিক্ষোভকারীরা। তবে সরকারের একজন মন্ত্রী বলছেন, একে তারা আদালতের নির্দেশনা বলেই মনে করেন, যা মানতে হবে। কোটার বিষয়টি মীমাংসার জন্য সচিব পর্যায়ের একটি কমিটি এখন কাজ করেছে। কোটা সংস্কার প্রশ্নে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুক্তি হচ্ছে: মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখতে হাইকোর্টের রায় থাকায় তাদের পক্ষে কোটা পদ্ধতিতে পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব নয়। কিন্তু হাইক��র্ট ও সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট আদেশ পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে যে, মূল রায় অন্য বিষয়ে হলেও কোটা বিষয়ে হাইকোর্ট তখন কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছিল। গত ২০১২ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরির বয়স সংক্রান্ত একটি রিট করেছিলেন খাদ্য বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন শিকদার। বাংলাদেশ সরকার ২০০৯ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরির বয়স ৫৭ বছর থেকে বাড়িয়ে ৫৯ বছর করেছিলেন। ২০১০ সালে এ সংক্রান্ত একটি আইন হয়। কিন্তু ২০১১ সালে অমুক্তিযোদ্ধা চাকরিজীবীদের বয়সও দু'বছর বাড়িয়ে ৫৯ বছর করা হয়। এর কারণ হিসাবে সরকার তখন কারো প্রতি বৈষম্য না করার কথা বলেছিল। সংস্কারপন্থীদের বিক্ষোভ আন্দোলন। আরও পড়তে পারেন: এইচএসসিতে পাশের হার কমার পাঁচ কারণ হুমায়ূন আহমেদের শেষ দিনগুলো যেভাবে কেটেছিলো রোহিঙ্গা নারী: যাদের মেকাপ আসে প্রকৃতি থেকে এর বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে মুক্তিযোদ্ধা চাকরিজীবীদের পক্ষে ঐ রিটটি করেন মি. শিকদার। সেখানে মুল বক্তব্য ছিল যে, অমুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরির বয়সসীমা এক করায় তাদের যে সম্মান ও স্বীকৃতি দেয়া হয়েছিল, তা ক্ষুণ্ণ হয়েছে। তবে আদালতে শুনানির সময় অ্যাটর্নি জেনারেল জানান যে, সরকার ইতোমধ্যেই মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরির অবসরের বয়স সীমা একবছর বাড়িয়ে ৬০ বছর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই বয়স ২০১০ সালের ৩রা ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর করতে হাইকোর্ট সরকারকে আদেশ দেন। ঐ রায়ের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা, পরিবহন এবং তাদের সন্তানদের চাকরিতে কোটা সংরক্ষণের বিষয়ে কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। কোটার বিষয়ে বলা হয়, চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ৩০% কোটা কঠোরভাবে বহাল রাখতে হবে এবং প্রার্থী পাওয়া না গেলে সেসব পদ খালি থাকবে। সেই রায়ের কিছু পর্যবেক্ষণের বিরুদ্ধে সরকার আপিল করে। আপিল বিভাগে শুনানির পর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিনামূল্যের চিকিৎসা ও পরিবহন সেবাসহ চাকরিতে কোটায় প্রার্থী না পাওয়া গেলে পদ খালি রাখার অংশটি বাদ দিয়ে দেন আপিল বিভাগ। পর্যবেক্ষণ হলেও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক একে রায় বলেই মনে করেন। আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী । তিনি বিবিসিকে বলেন, "আমার বিবেচনায় এটা আর পর্যবেক্ষণ নয়, এটা একটা রায়। কারণ আদালত সরকারকে সেটা মানতে বলে দিয়েছেন। তাই এটা বাধ্যতামূলকভাবে মানতে হবে।" তবে মন্ত্রী জানান, মুক্তিযোদ্ধা কোটা থেকে যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে মেধা ভিত্তিতে প্রার্থী নেয়ার সুযোগ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। সরকার সে অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, প্রার্থী নেয়া হচ্ছে। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য কোটা রক্ষার কথা বলা হলেও, নাতি-নাতনিদের সুযোগ পাওয়া প্রসঙ্গে কিছু বলা হয়নি, যা পরবর্তীতে সরকার বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সংযোজন করে। এই বিষয়ে মি. হক বলেন, ''এটা সরকারি আদেশে হয়েছে। কেউ যদি মনে করেন সেটা ঠিক হয়নি, তাহলে হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন।'' "চিলড্রেন' বলতে আমরা 'গ্র্যান্ড চিলড্রেন' বুঝায় বলে মনে করি। কেউ যদি মনে করে যে সেটা বোঝায় না, তাহলে তারা আদালতে যেতে পারেন। আদালত ফয়সালা দিয়ে দেবেন।" এতো পরে কেন সরকার বিষয়টি সামনে তুলে ধরেছে, জানতে চাইলে আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক বলেন, "বেটার লেট দ্যান নেভার। যখনি কোটা সংস্কারের জন্য কমিটি হয়েছে, তখনি আমি বিষয়টি তুলে ধরে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। এখন তারা (সচিব কমিটি) বিষয়টি বিবেচনা করবেন।" দুহাজার বারো সালের হাইকোর্টের সেই রায় পুরোপুরি অনুসরণ না করায় পরে কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার একটি মামলা হয়, যা এখনো চলছে। এমন প্রেক্ষাপটে কোটা সংক্রান্ত আদালতের পর্যবেক্ষণ আবার আলোচনায় উঠে এসেছে। ড. শাহদীন মালিক, আইন বিশেষজ্ঞ। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেক গুরুত্বপূর্ণ রায়ের সঙ্গে দেয়া পর্যবেক্ষণ সরকারের অনুসরণ না করার উদাহরণ রয়েছে, যদিও সেসব ক্ষেত্রে আইন ব্যবস্থার কোন নজির নেই। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী জানান, পর্যবেক্ষণ মানা না মানার বিষয়ে এখনো তার কাছে কোন মতামত চাওয়া হয়নি। সেরকম অভিমত চাইলে তিনি সরকারকে পরামর্শ দেবেন। এ বিষয়ে আর কোন কথা বলতে তিনি রাজি হননি। আইন বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলছেন, আদালতের সব পর্যবেক্ষণ মানা সরকারের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। তিনি বলেন, "যেসব পর্যবেক্ষণ রায়ের বিচার্য বিষয়ের সঙ্গে সরাসরি জড়িত, সেগুলো মেনে চলার বাধ্যবাধকতা অনেক বেশি। কিন্তু যেগুলো সরাসরি জড়িত নয়, সেগুলো মেনে চলার বাধ্যবাধকতা অনেক কম। ঐতিহাসিকভাবে আমাদের দেশে রায়ের বেশিরভাগ ���র্যবেক্ষণ সরকার মেনে চলে না।'' তিনি জানান, হাইকোর্টের ঐ রিটের মূল বিষয় ছিল চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের বয়সের ব্যাপারটি। তার সঙ্গে তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা বা পরিবহন সেবা, সন্তানদের চাকরিতে কোটা সংরক্ষণের যে বিষয়গুলো এসেছে, সেটা মূল বিষয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। যেসব বিষয় সরাসরি সম্পৃক্ত না, সেটি মানতে সরকার বাধ্যও নয়। বরং তার মতে বিচার্য বিষয়ের সঙ্গে জড়িত অনেক পর্যবেক্ষণও সরকার মানে না। "এর একটি উদাহরণ হলো রিমান্ড ও গ্রেপ্তার সংক্রান্ত যে পর্যবেক্ষণ, অনেক কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, কিন্তু সেগুলো গত কয়েকবছরে সেভাবে মানাও হয়নি," বলছেন ড. মালিক। এ বছর এপ্রিলে কোট সংস্কারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ (ফাইল ফটো) "এরকম পর্যবেক্ষণ সরকার না মানলে এক্ষেত্রে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ নেই, সেটি না মানলেও কিছু হয়না। তবে বিষয়টি সরকারের আইনের প্রতি শ্রদ্ধার সঙ্গে সম্পৃক্ত। উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ যদি সরকার মেনে চলে, তা আইনের শাসনের জন্য ভালো।'' "কিন্তু বাংলাদেশের সরকারগুলি এরকম পর্যবেক্ষণ খুব একটা মানে না।" মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের চাকরিতে কোটার ক্ষেত্রে যে পর্যবেক্ষণের কথা বলা হয়েছে, সেটি অনুসরণে সরকারের বাধ্যবাধকতা নেই বললেই চলে বলে ব্যাখ্যা করছেন ড. শাহদীন মালিক। বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে এখন ৫৬% কোটা রয়েছে। শিক্ষার্থীরা পুরো কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করলেও, সংরক্ষিত কোটার মধ্যে বড় অংশ, ৩০% মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং তাদের নাতি-নাতনিদের জন্য সংরক্ষিত থাকায় সেটিই এখন আলোচনার কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। এর বাইরে নারীদের জন্য ১০%, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০%, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ৫% আর ১% প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত। এই ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে গত কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। ১১ই এপ্রিল বাংলাদেশের পার্লামেন্টে দেয়া একটি ঘোষণায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পুরো কোটা ব্যবস্থা বাতিলের ঘোষণা দেন। এরপর বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য একটি সচিব কমিটিও গঠন করা হয়েছে। তবে গত ১২ই এপ্রিল তিনি আবার সংসদে বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশ থাকায় সেটি সরকারের পক্ষে পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। কোটা ব্যবস্থা বাতিল চেয়ে এ বছরের মার্চ মাসে আদালতে একটি রিট করা হয়েছিল�� সেই রিট খারিজ করে দিয়ে আদালত বলেছিলেন যে, এটা সরকারের বিষয়, আদালতের নয়। বাংলাদেশের সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে হাইকোর্টের রায়ের কারণ দেখিয়ে সরকার বলছে যে, চাকরির মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংস্কার সম্ভব নয়, সেটি আসলে একটি আদালতের একটি পর্যবেক্ষণ, যা বাধ্যতামূলক নয়। +text: বেকার হোস্টেলের যে কক্ষটিতে শেখ মুজিবুর রহমান থাকতেন সেখানে এ ভাস্কর্যটি স্থাপন করা হয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্রজীবনে কলকাতার যে ছাত্রাবাসে থাকতেন, সেই বেকার হোস্টেলের বর্তমান বাসিন্দাদের একাংশ এই দাবি তুলছেন। বেকার হোস্টেলটি মুসলমান ছাত্রদের আবাস। শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য সরানোর দাবি নিয়ে কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসে ছাত্রদের একাংশ মঙ্গলবার যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা জানিয়েছেন যে উপ-দূতাবাসে পৌঁছানোর আগেই পুলিশ তাদের গতিরোধ করে। তাদের দাবী সনদও জমা নিতে চায়নি বাংলাদেশের উপ-দূতাবাস কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় থানার অফিসার-ইন-চার্জ সেটি গ্রহণ করেছেন বলে দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মুহম্মদ কামরুজ্জামান। সরকারী ছাত্রাবাস বেকার হোস্টেলের যে ঘরে শেখ মুজিব থাকতেন, সেটিতে একটি সংগ্রহশালা তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে। ওই সংগ্রহশালাতেই বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতির ভাস্কর্য স্থাপন করেন বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি। আরো পড়ুন বাবরি মসজিদ: হিন্দু-মুসলিম সমঝোতা চায় আদালত ইংলিশ 'অ্যাশেসের' মতো শ্রী লঙ্কা ক্রিকেটের শেষকৃত্য! বর্তমানে বেকার হোস্টেলে বসবাসকারী ছাত্রদের মধ্যে যারা ভাস্কর্যটি সরিয়ে ফেলার দাবি করছেন, তারা বলছেন গোটা হোস্টেল চত্বরে ইসলামিক পরিমণ্ডল রয়েছে। সেখানে একটি মসজিদও আছে। তার মধ্যে কোনও ব্যক্তির ভাস্কর্য রাখাকে 'ইসলাম-বিরোধী' হিসেবে বর্ণনা করছে দাবি উত্থাপনকারী ছাত্ররা। তবে সেখানে যে সংগ্রহশালা রয়েছে, সে ব্যাপারে তাদের আপত্তি নেই। কলকাতার বেকার হোস্টেল একজন শিক্ষার্থী সাহেব আলি শেখ বলছিলেন, "এই হোস্টেলে যারা থাকি, সকলেই মুসলমান। এটা একটা ধর্মীয় স্থানও - মসজিদ আছে। ইসলাম ধর্মে মূর্তি পূজা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। তাই আমাদের হোস্টেলের পরিবেশে কোনও ব্যক্তির মূর্তি রাখা আমরা মেনে নিতে পারছি না।" বেকার হোস্টেলে থেকে এমএ পড়ছেন নাজমুল আরেফিন। তার কথায়, "বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি। আমাদের হোস্টেলেরই প্রাক্তন আবাসিক। কোনও অসম্মান হোক তাঁর, সেটা আমরা চাই না। কিন্তু একই সঙ্গে এটা একটা ধর্মীয় প্রাঙ্গণ। সেখানে কোনও ব্যক্তির মূর্তি থাকা কোনভাবেই মেনে নিতে পারি না। সংগ্রহশালা করা হোক, লাইব্রেরী করা হোক, কিন্তু মূর্তিটা সরানোর দাবি করছি আমরা।" "ওই মূর্তিটা সংগ্রহশালার ঘরে লাগানো কাঁচের দরজার বাইরে থেকেই দেখা যায়। সেখানে অনেক ফুলও দেওয়া হয়েছে সম্প্রতি। একটা ইসলামিক পরিবেশে মূর্তি থাকাটা হারাম। তাই সেটিকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হোক," বলছিলেন বেকার হোস্টেলের আরেক আবাসিক ছাত্র মুহম্মদ গোলাম মাসুদ মোল্লা। ঋতিক হাসান বেকার হোস্টেলেই থাকেন। যে কলেজে শেখ মুজিবুর রহমান পড়তেন, সেই মাওলানা আজাদ কলেজেই উদ্ভিদ বিজ্ঞানে অনার্স পড়ছেন। হোস্টেল থেকে কলেজে যাওয়ার পথে তিনি বলছিলেন, "বঙ্গবন্ধুকে আমরা সকলেই অত্যন্ত শ্রদ্ধা করি। কিন্তু ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী মূর্তি রাখা অনুচিত। তাই সেটিকে সরিয়ে দেওয়া হোক।" ছাত্রাবস্থায় শেখ মুজিবুর রহমান বেকার হোস্টেলের বাসিন্দা হয়ে পড়শোনা করতেন তখনকার ইসলামিয়া কলেজে, যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বর্তমান নাম মাওলানা আজাদ কলেজ। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই ছাত্রাবাস পরিচালনা করলেও তিনতলার যে ঘরে শেখ মুজিব থাকতেন, সেখানে তৈরি হওয়া সংগ্রহশালাটি তাদের সহযোগিতায় বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস দেখাশুনা করে। ঘরের মূল চাবিটিও থাকে উপ-দূতাবাসেই। অন্য চাবিটি থাকে হোস্টেলের সুপারিন্টেনডেন্ট ও মাওলানা আজাদ কলেজের অধ্যাপক দবীর আহমেদের কাছে। একটি সংগ্রহশালা তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে। মি. আহমেদের কাছে অবশ্য আবাসিক ছাত্ররা শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি সরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে কোনও আবেদন জানান নি। সম্প্রতি ১৭ই মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে ওই সংগ্রহশালায় রাখা ভাস্কর্যে ফুলের স্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় উপ-দূতাবাস সহ নানা সংগঠনের পক্ষ থেকে। বেকার হোস্টেলের প্রাক্তন আবাসিক ও বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলছিলেন, সেদিন থেকেই শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য সরানোর ব্যাপারে সরব হয় বর্তমান আবাসিকরা। "পশ্চিমবঙ্গের কোনও সিলেবাসে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর সম্পর্কে পড়ানো হয় না। তাই সাধারন ছাত্রদের পক্ষে এটা জানা সম্ভব নয় বঙ্গবন্ধুর জীবন, বাংলা ভাষা, বাঙালী জাতির জন্য তাঁর লড়াই সংগ্রাম কী ছিল। সেজন্যই সংগ্রহশালা হচ্ছে না মূর্তি বসানো হচ্ছে, তা নিয়ে এতদিন ওই হোস্টেলের আবাসিকদের আগ্রহ ছিল না। কিন্তু ১৭ই মার্চের অনুষ্ঠানের পরে ছাত্রদের মধ্যে একটা তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। ওই মূর্তি মুসলিম ছাত্রাবাসে রাখা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কলকাতার যে কোনও জায়গায় সম্মানের সঙ্গে ওই মূর্তি স্থাপন করা হোক," বলছিলেন মি. কামরুজ্জামান। বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের সূত্র বলছে, তাদের কাছেও শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নিয়ে বেকার হোস্টেলের ছাত্রদের এই প্রতিক্রিয়ার খবর পৌঁছেছে। বিষয়টি তারা পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং ভারত সরকারের কাছে জানিয়েছেন। কিন্তু তারা এটা বুঝতে পারছেন না যে সংগ্রহশালায় ভাস্কর্য বসানোর এতদিন পরে হঠাৎ করে কেন ছাত্রদের মধ্যে এই প্রতিক্রিয়া তৈরি হলো? বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাস্কর্য সরানোর দাবি তুলছে কলকাতার মুসলমান ছাত্রদের একাংশ। +text: কক্সবাজারের উখিয়ায় বালুখালি ক্যাম্পে কয়েকটি রোহিঙ্গা শিশু গোসল করছে। ২১শে সেপ্টেম্বরের ছবি। পশ্চিমবঙ্গ শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন ভারতের সুপ্রীম কোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করেছে এ নিয়ে। কিন্তু কী কারণে এমন সিদ্ধান্ত? শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চ্যাটার্জী বিবিসিকে বলছেন, "কেন্দ্রীয় সরকার বলছে রোহিঙ্গারা নাকি জাতীয় সুরক্ষা বিঘ্নিত করতে পারেন, তাই তাদের ফেরত পাঠানোর কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের পশ্চিমবঙ্গে যে রোহিঙ্গা শিশুরা রয়েছে, তাদের আমরা মৃত্যু উপত্যকায় ফেরত পাঠাতে পারি না। কারণ সারা বিশ্ব জানে সেখানে কী চলছে।" বেআইনীভাবে ভারতে প্রবেশের দায়ে আটক হওয়া ২৪ জন রোহিঙ্গা শিশু-কিশোর পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে। এছাড়া আরও ২০টি শিশু তাদের মায়ের সঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন কারাগারে। ওই মায়েরাও বেআইনীভাবে ভারতে প্রবেশের দায়ে সাজা খাটছেন। "শিশুরা তো আর জঙ্গী নয়। তারাতো আর জাতীয় নিরাপত্তার কোনও বিঘ্ন ঘটাতে পারে না। তাদের মুক্তি দিতে চাইছি আমরা। সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদনে আমরা সেটাই উল্লেখ করেছি"- বলছিলেন মিস চ্যাটার্জী। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শিশুর হাতে ত্রাণের খাবার। রাখাইনের সহিংসতা থেকে পালিয়ে এসেছে সে। ১৯শে সেপ্টেম্বরের ছবি এটি। এই রোহিঙ্গা শিশু-কিশোরদের প্রত্যেকের জন্যই জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার পরিচয়পত্র তৈরি হয়ে গেছে। সেটা বিলি করারও কথা ছিল কয়েক সপ্তাহ আগে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করার যে নির্দেশ দিয়েছে, সে কারণেই শরণার্থী পরিচয়পত্র বিলি করার কাজ থমকে গেছে। প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে চিঠি পাঠিয়ে সে রাজ্যে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করে তার একটি তালিকা তৈরি করতে বলেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। পশ্চিমবঙ্গ অবশ্য সেই কাজ শুরু করেনি এখনও। রাজ্যের হেফাজতে থাকা রোহিঙ্গা শিশু-কিশোরদের শরণার্থী পরিচয়পত্র দেওয়া গেলে তাদের মুক্তি দেওয়া যাবে। তারপরে তারা দিল্লি বা জম্মুর রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতেও যেতে পারে অথবা রাজ্য সরকারি শিশু-কিশোর আবাসগুলোতেও থাকতে পারে বলে কমিশন জানিয়েছে। ভারতে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের যেন মিয়ানমারে ফেরত না পাঠানো হয়, তার জন্য মূল মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে চলছে। বিবিসি বাংলার আরো খবর: ভারত সরকার যখন সেদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে, তখনই পশ্চিমবঙ্গ বলছে রাজ্যের হেফাজতে থাকা ৪৪টি রোহিঙ্গা শিশুকে তারা কখনোই ফেরত পাঠাবে না। +text: পুলিশের কাছে একটি চিঠিতে সাত বছরের হানিফা জারা অভিযোগ করেছে যে, তার বাবা তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে, সেজন্য তাকে গ্রেপ্তার করা উচিত। পুলিশের কাছে একটি চিঠিতে সাত বছরের হানিফা জারা অভিযোগ করেছে যে, তার বাবা তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে, সেজন্য তাকে গ্রেপ্তার করা উচিত। কারণ বাইরে খোলা স্থানে মলমূত্র ত্যাগ করতে তার অনেক লজ্জা লাগে। এখনো অনেক ভারতীয় শৌচাগার সুবিধার বাইরে রয়েছে। ইউনিসেফের হিসাবে, ভারতের অন্তত পঞ্চাশ কোটি মানুষ ঘরের বাইরে মাঠেঘাটে বা খোলা স্থানে মলমূত্র ত্যাগ করে থাকে। আরো পড়ুন: বাড়িতে টয়লেট নেই, তবু হেলিকপ্টার ভাড়া করে বিয়ে ভারতে লোকেরা টয়লেটে যায় না কেন? ভারতে ৭০ কোটি লোক প্রকাশ্যে মলমূত্র ত্যাগ করে ভারতে এবার খোলা জায়গায় মলত্যাগ নিয়ে চলচ্চিত্র পুলিশের কাছে লেখা হানিফার চিঠি তামিলনাডু রাজ্যের আম্বুর নামের একটি শহরে বাবা-মায়ের সঙ্গে বসবাস করে হানিফা। তাদের বাড়িতে কোন টয়লেট বা শৌচাগার নেই। হানিফা বিবিসি তামিল বিভাগকে বলেছে, তাদের বাড়ির আশেপাশের কয়েকজন প্রতিবেশীর এই সুবিধা রয়েছে। তাই বাড়িতে একটি শৌচাগার বানানোর জন্য সে তার বাবাকে বলেছিল। তখন সে নার্সারিতে পড়তো। ''বাইরে গিয়ে মলমূত্র ত্যাগ করতে আমার লজ্জা লাগে। যখন মানুষজন আমার দিকে তাকিয়ে থাকে, তখন আমার খুব খারাপ লাগে।'' খোলা স্থানে পয়ঃনিষ্কাশনের ক্ষতি সম্পর্কে স্কুলে জানার পর সে এ বিষয়ে আরো বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠে। পুলিশের কাছে লেখা চিঠিতে হানিফা লিখেছে, তার বাবা তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যদি সে ক্লাসে শীর্ষে ওঠে, তাহলে বাড়িতে শৌচাগার বানিয়ে দেবে। ''নার্সারি থেকে আমি আমার ক্লাসে সবচেয়ে ভালো ফল করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছি।'' সে লিখেছে। পুলিশ স্টেশনে হানিফা, তার বাবা ও মা ''আমি এখন দ্বিতীয় অবস্থানে আছি। কিন্তু তিনি শুধু বলেই যাচ্ছেন যে, তিনি টয়লেট বানাবেন। এটা একরকম প্রতারণা, সুতরাং তাকে গ্রেপ্তার করুন।'' হানিফার অনুরোধ, যদি তার বাবাকে গ্রেপ্তার করা না হয়, তাহলে পুলিশ যেন অন্তত তার কাছ থেকে দিনক্ষণ লেখা মুচলেকা নিয়ে রাখে যে, কবে তিনি বাড়িতে শৌচাগার বানিয়ে দেবেন। হানিফার বাবা এহসানুল্লাহ বিবিসি তামিলকে বলেছেন, তিনি আসলে শৌচাগারটি বানানোর কাজ শুরু করেছেন, কিন্তু পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে সেটির কাজ শেষ করতে পারেননি। কারণ এখন তিনি কর্মহীন। ''আরো খানিকটা সময় দেয়ার জন্য হানিফাকে আমি বলেছিলাম, কিন্তু সে আমার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে, কারণ আমি আমার কথা রাখতে পারিনি।'' কিন্তু হানিফার মন তাতে গলেনি। ''একই বিষয় নিয়ে তাকে আমার কতদিন বলতে হবে? তিনি আমাকে একই অজুহাত দিয়ে যাচ্ছেন যে যথেষ্ট টাকা নেই। সেজন্য আমি পুলিশের কাছে গেছি।'' সোমবার মায়ের সঙ্গে সে তার স্কুলের কাছের পুলিশ স্টেশনে গিয়ে হাজির হয়। হানিফার বাবা এহসানুল্লাহ বলছেন, তিনি টয়লেট তৈরির কাজ শুরু করেছেন, তবে পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে শেষ করতে পারেননি পুলিশ অফিসার এ ভালারমাথি বিবিসি তামিলকে বলছেন, ''ব্যাগ ভর্তি করে ট্রফি আর মেধার অনেক সার্টিফিকেট নিয়ে সে থানায় এসে সেগুলো টেবিলে সাজিয়ে রাখতে শুরু করে। এরপর সে আমাদের জিজ্ঞেস করে, তোমরা কি আমাকে একটি টয়লেট (শৌচাগার) দিতে পারবে? মি. ভালারমাথি ��লছেন, তারা মি. এহসানুল্লাহকে ডেকে পাঠালে তিনি দ্রুত পুলিশ স্টেশনে হাজির হন। তিনি ভেবেছিলেন যে, তার স্ত্রী আর মেয়ে কোন বিপদে পড়েছে। কিন্তু কি কারণে তাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে, সেটা জেনে তিনি হতবাক হয়ে যান। হানিফার লেখা চিঠির বিস্তারিত পড়ে মি. এহসানুল্লাহ বলেন, কিভাবে আনুষ্ঠানিক চিঠি লিখতে হয়, সেটা তাকে পর্যবেক্ষণ করে করেই হয়তো হানিফা শিখেছে। কারণ গ্রামের মানুষজনকে মাঝে মাঝে অফিসের জন্য কাগজপত্র পূরণ করা বা চিঠি লেখার কাজে তিনি সহায়তা করে থাকেন। ''আমি কখনো ভাবিনি, এটা আমার দিকেই আবার ফিরে আসবে,'' তিনি বলছেন। হানিফার এই চেষ্টা পুলিশ কর্মকর্তাদের সহানুভূতি পেয়েছে। ''তার অভিযোগটি খুব সৎ এবং সরল, তাই আমরা সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করেছি।'' বলছেন পুলিশ কর্মকর্তা ভালারমাথি। তার এই কর্মকাণ্ডে জেলা কর্মকর্তাদের টনক নড়েছে। এখন তারা হানিফা ও তার প্রতিবেশীদের জন্য পাঁচশোর বেশি শৌচাগার বানানোর জন্য অর্থসংগ্রহ শুরু করেছেন। ভারতের গ্রামেগঞ্জে মহিলা ও শিশুদের প্রকাশ্য স্থানে মলত্যাগ এখনও খুব স্বাভাবিক একটি ঘটনা (ফাইল চিত্র) ''তার অভিযোগটি দেখে আমরা খুবই খুশী হয়েছি। আমরা স্কুলে এরকম ক্লাসের আয়োজন করছি,যাতে ছাত্রছাত্রীরা বাড়িতে শৌচাগার বসানোর জন্য তাদের বাবা-মায়ের কাছে দাবি তোলেন।'' বলছেন সিটি কমিশনার এস পার্থসারথি। তিনি বলছেন, ক্লিন ইন্ডিয়া ক্যাম্পেইনে স্থানীয় মুখ হিসাবে তারা হানিফার ছবি অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করছেন। ২০১৯ সালের মধ্যে ভারতের প্রতিটি বাড়িতে শৌচাগার স্থাপনের পরিকল্পনা করছে দেশটির সরকার, তবে অনেক স্থানে সেই পরিকল্পনা বাধার মুখে পড়েছে। সাম্প্রতিক একটি জরিপে জানা যাচ্ছে, প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাসকারী ৮৯ শতাংশ ভারতীয় খোলা স্থানে মল মূত্র ত্যাগ করতে পছন্দ করে, কারণ তারা চায় না তাদের বাড়ির কাছাকাছি স্থানে শৌচাগার থাকুক। হানিফা বলছে, তার চিঠির ফলাফল দেখে সে খুবই খুশী। গত দশদিন ধরে সে তার বাবার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ রেখেছিল। তবে পুলিশ তাদের মধ্যে শান্তি স্থাপন করতে পেরেছে। হানিফা এবং তার বাবা অবশেষে পরস্পর হাত মিলিয়ে সন্ধি করেছে। টয়লেট বা শৌচাগার বানিয়ে দেয়ার কথা দিয়েও সেটি না রাখায় ভারতের সাত বছরের একটি কন্যা শিশু তার বাবার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছে। +text: বিমান থেকে ভাসানচরে রোহ���ঙ্গাদের জন্য তৈরি আবাসন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বিবিসিকে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য ভাসানচর এখন পুরোপুরি প্রস্তুত হয়েছে। "আমাদের প্রত্যাশা ছিল, এই বর্ষা মৌসুমের পরই তাদের নিয়ে যাওয়ার। বর্ষা শেষ হয়েছে, এখন শীতকাল শুরুর আগেই রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে আশা করি" - বলেন মি.আলম। তিনি জানিয়েছেন, মিয়ানমার থেকে আসা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে যারা আগে এসেছেন, তাদের মধ্য থেকে এক লাখ লোককে প্রথমে সেখানে নেয়া হবে। কর্মকর্তারা বলেছেন, ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য রোহিঙ্গাদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজারের মতো তালিকাভূক্ত হয়েছেন। আরো পড়ুন: ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য আসলে কী আছে? 'ভাসানচর মিয়ানমারের কাছে ভুল বার্তা দেবে' প্রায় ১২শ' একর জমির ওপর ভাসানচরকে পুরোপুরি বসবাসের উপযোগী করা হয়েছে বলে সরকার বলছে। সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, ভাসানচরের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের একটি পূর্ণাঙ্গ থানা স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। নোয়াখালী জেলার অন্তর্ভুক্ত এই চরে স্থানান্তরের ব্যাপারে রোহিঙ্গাদের আপত্তি ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার তাদের বুঝিয়ে রাজী করানোর জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছিল। এখন ভাসানচরে পাঠানোর জন্য রোহিঙ্গাদের তালিকা তৈরির কাজও এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম পর পর দুটি টুইট বার্তায় বলেছেন, ভাসান চর প্রস্তুত। তিনি বিবিসিকে বলেন, অল্প সময়ের মধ্যেই রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের চেষ্টা করছেন তারা। ভাসানচরের রোহিঙ্গা আবাসনে যা যা থাকবে যত দ্রুততার সাথে সম্ভব এটা করা হবে জানিয়ে মি. আলম বলেন, "ইউএনএইচসিআর এবং আইওএম এর কর্তাব্যক্তিরা চার মাস আগে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। তখন তাদের কাছেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর পরিকল্পনা খুব পরিস্কারভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।" জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার বা ইউএনএই্চসিআরসহ যে সব আন্তর্জাতিক সংস্থা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা করছে, তাদের জোর আপত্তি ছিল ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের ব্যাপারে। বাংলাদেশ সরকার এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাথে কয়েকদফা আলোচনা করেছে। সে সময় এসব সংস্থা রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তাসহ বেশ কিছু বিষয় সরকারের ��িবেচনার জন্য তুলে ধরেছিল। ইউএনএইচসিআর এর একজন কর্মকর্তা লুইস ডনোভান বলেছেন, ভাসানচরে স্থানান্তরের আগে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার উত্থাপিত বিষয়গুলো সরকার বিবেচনা করবে বলে তারা আশা করছেন। "ইউএন সব সময় বলে আসছে, এই স্থানান্তর স্বেচ্ছায় হতে হবে এবং সরকার অতীতে সে রকম প্রতিশ্রুতিই দিয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, জায়গাটি বসবাসের উপযোগী কিনা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা কী - এ বিষয়ে সরকার রোহিঙ্গাদের বিস্তারিত জানাবে। রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিদের আগে ঐ ভাসান চর পরিদর্শন করিয়ে তারপর তাদের মতামত দেয়ার সুযোগ দেয়া উচিত।" যদিও সরকার বলছে যে এখন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনেকে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যাওয়ার জন্য তালিকাভূক্ত হচ্ছেন, কিন্তু তার পরেও অনেক রোহিঙ্গার মাঝে এ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। একজন রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাহ বলছিলেন, ভাসানচরে তাদের নিরাপত্তা এবং বসবাসের উপযোগী ব্যবস্থা আসলে কতটা নেয়া হয়েছে, তার বিস্তারিত তাদের আগে জানাতে হবে। এই রোহিঙ্গা নেতা বলছিলেন, "আগে আমাদের ভাসানচরে নিয়ে গিয়ে সেখানকার পরিবেশ দেখাতে হবে, তাহলে মানুষের বিশ্বাস হবে।" "চোখে না দেখলে এবং বিশ্বাস না হলে মানুষ কিভাবে সেখানে যাবে?" প্রশ্ন করেন তিনি। ভাসানচরের অবস্থান মানচিত্রে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম অবশ্য বলেছেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর উত্থাপিত বিষয়গুলোও গুরুত্ব দিয়ে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন মেনেই রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলছিলেন, "ভাসানচরে যে স্থাপনাগুলো করা হয়েছে, এগুলো যে কোন ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম। আমরা শুধু ঘরগুলো বানাইনি। এমনভাবে বাঁধ দেয়া হয়েছে, যাতে জলোচ্ছ্বাসে কোন ক্ষতি না হয়। তাদের শিক্ষারও ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। প্রথমে এক লাখ রোহিঙ্গাকে সেখানে নেয়া হবে।" এর পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকার চীনের সহায়তায় মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়িয়ে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় অনেক সময় লেগে যেতে পারে বলে বাংলাদেশ মনে করছে। আর সেজন্যই রোহিঙ্গাদের একটা অংশকে ভাসানচরে দ্রুত স্থানান্তর করতে চাইছে সরকার, এমনটাই বলছেন কর্মকর্তারা। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: ভোলায় হিন্দুদের বাড়ি, মন্দিরে হামলার ঘটনাও ঘটেছিল ক্র���কেটারদের ধর্মঘট ষড়যন্ত্রের অংশ - পাপন ফেসবুক-মেসেঞ্জার হ্যাক হওয়া ঠেকাবেন যেভাবে জাপানের সম্রাটের যে তিন সম্পদ কেউ দেখতে পায় না নকল ঠেকাতে মাথায় বাক্স পরে কলেজে পরীক্ষা কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদেরকে আগামী মাস খানেকের মধ্যে অর্থাৎ শীত মৌসুম আসার আগেই ভাসানচরে স্থানান্তর শুরু করতে চাইছে বাংলাদেশের সরকার। +text: বিতর্কের ঝড় তোলা সেই সেলফি ওই দুর্ঘটনায় আহত তিনজনই মারা গেছেন। পুলিশ বলছে, প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ কেউ যদি সেলফি না তুলে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেত, তাহলে হয়তো বেঁচে যেতেন তিনজনই। বারমের জেলার চোহতান থানা এলাকার এই ঘটনা দুদিন আগের, তবে ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ায় সামাজিক মাধ্যম আর গণমাধ্যমে ব্যাপক কথাবার্তা হচ্ছে এখন। চোহতান থানার অফিসার ইনচার্জ মনোহর বিশনোই বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "মাট্টে কা তালাও নামের একটি গ্রামে ওই দুর্ঘটনা হয়। মৃত ব্যক্তিরা একটি মোটরসাইকেলে চেপে যাচ্ছিলেন।" "সেই সময়ে একটি স্কুল বাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে তাদের বাইকটির। মাথায় চোট পান, প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। আশপাশে অনেকেই ছিলেন কিন্তু কেউ হাসপাতালে নিয়ে যান নি। একজন ব্যস্ত ছিল সেলফি তুলতে।" পুলিশ যখন খবর পেয়ে পৌঁছয়, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ঘটনাস্থলে একজন মারা যান, একজনের মৃত্যু হয় হাসাপাতালে। তৃতীয় ব্যক্তিকে বড় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়ে তারও মৃত্যু হয়। মি বিশনোই জানিয়েছেন, মৃত তিনজনেই গুজরাতের একটি কারখানায় শ্রমিক ছিলেন। অন্য দিকে যে ব্যক্তি রক্তাক্ত দেহগুলির সামনে দাঁড়িয়ে সেলফি ভিডিও তুলছিলেন, তাকে এখনও শনাক্ত করা যায় নি। কিন্তু শনাক্ত করা গেলেও আহত ব্যক্তিদের সামনে দাঁড়িয়ে সেলফি তোলার জন্য কোন আইনে অভিযোগ দায়ের করা যেতে পারে, তা স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। আমাদের পেজে আরও পড়ুন: কেন আর কীভাবে খালেদা জিয়ার আইনজীবী লর্ড কার্লাইলকে বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠাল ভারত? চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধ: সঙ্কটের মুখে চীনা শিল্প? 'বিরিয়ানি নিয়ে যুদ্ধে' উত্তপ্ত ভারতের দুই রাজ্য ভারতের বহু সংরক্ষিত বনাঞ্চলেও সেলফি তোলা বারণ "সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে যে দুর্ঘটনায় আহতদের কেউ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে প্রশ্ন বা জেরা করা হবে না। আমরা করিও না। কিন্তু এক্ষেত্রে সেলফি তোলার জন্য কী মামলা করব? কেউ যদি থানায় অজ্ঞাতপরিচয় সেই ব্যক্তির নামে অভিযোগ করত, তাও না হয় ব্যবস্থা নেওয়া যেত," বলছিলেন বিবিসি রেডিও অনুষ্ঠানগুলির নিয়মিত শ্রোতা এই পুলিশ অফিসার। সেলফি তোলা নিয়ে ভারতীয়দের মাতামাতি অবশ্য নতুন নয়। গত কয়েকবছরে বিপজ্জনক জায়গায় সেলফি তুলতে গিয়ে অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন। চলন্ত ট্রেনের পাশে দাঁড়িয়ে অথবা উত্তাল সমুদ্রের কিনারায় সেলফি তুলতে গিয়ে মারা যাওয়ার খবর মাঝে মাঝেই সংবাদে প্রকাশ পায়। আবার এমনও দেখা গেছে যে কোনও বাড়িতে আগুন লেগেছে, অথচ তার সামনে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছেন কেউ কেউ। মনোবিদরা সেলফি নিয়ে এই মাতামাতিকে এক ধরনের মনোরোগ বলেই চিহ্নিত করছেন। যে কোনও অবস্থায়, যে কোনও পরিস্থিতিতে নিজের ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার পাওয়ার অদম্য আকাঙ্ক্ষা থেকেই বিপদের ঝুঁকি নিচ্ছেন মানুষ। সেলফি-বিপদ নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে অনেক রাজ্যেই পর্যটকস্থল বা বিপদসঙ্কুল জায়গায় সেলফি তোলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সেলফি তোলায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সংরক্ষিত বনাঞ্চলগুলিতেও। এমনকী কলকাতা শহরে দুর্গাপুজোর অনেক মন্ডপেই সেলফি তোলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ভারতের রাজস্থানে একটি পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম অবস্থায় পড়ে রয়েছেন তিন ব্যক্তি, আর একজন সেলফি তুলছেন - এরকম একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেছে। +text: সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে ২০১৯ সালে বাংলাদেশিদের জমা রাখা অর্থের পরিমাণ প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদক বলেছে, গত বছর অর্থপাচার নিয়ে ব্যাপক আলোচনার মুখে তথ্যের জন্য সুইজারল্যান্ড ব্যাংকের সাথে সমঝোতার উদ্যোগ নিতে দুদক সংশ্লিষ্ট বিভাগকে চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু এক বছরেও অগ্রগতির কোন খবর মেলেনি। সরকারের একজন মন্ত্রী বলেছেন, বিদেশে টাকা পাচার হওয়ার পর এর তথ্য জেনে বাংলাদেশে তা ফেরত আনার ক্ষেত্রে তৎপরতায় এখনও দুর্বলতা রয়েছে। সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবছর যে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০১৯ সালে সেখানে ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের জমা রাখা অর্থের পরিমাণ ৫হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। যা এর আগের বছর থেকে দেড়শ কোটি টাকা কমেছে। কিন্তু সামান্য কমার এই ধারা সন্তোষজনক নয় বলে মনে করেন বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদরা। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডি'র নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, বিদেশে টাকা পাচার এবং সেই অর্থ ফেরত আনার ব্যাপারে কার্যকর কোন পদক্ষেপ না থাকায় পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে না। "যে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে, এটার প্রবাহ বন্ধ করা এবং অর্থ ফিরিয়ে আনা-এই দু'টোর জন্যই যে ধরণের রাজনৈতিক এবং আইনি কাঠামো দরকার, সেটা আমাদের এখানে অনুপস্থিত রয়েছে।" বিদেশের ব্যাংকে কাদের অর্থ, কীভাবে যায়? বিদেশের ব্যাংকে জমা হওয়া এবং পাচার হওয়া অর্থের উৎস নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, "যে অর্থ বিদেশে যায়, তার বেশিরভাগই অপ্রদর্শিত বা দুর্নীতির অর্থ। আরেকভাবে যায়, সেটা হচ্ছে, ব্যবসা বাণিজ্য বিশেষ করে আমদানি রপ্তানির মাধ্যমে। এসব উপায়ে যে টাকা চলে গেছে, সেটা কিন্তু সুইস ব্যাংক এবং গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির রিপোর্টেও দেখা যায়।" গত বছরও সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ জমা রাখার বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, যদিও সংশ্লিষ্ট আইনে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া অন্য কারও বিদেশে অর্থ পাচারের বিষয়ে তাদের দেখার ক্ষমতা নাই। এরপরও গত বছর তিনি বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়ে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ সম্পর্কে তথ্য জানার জন্য সমঝোতার উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। এক বছরেও তিনি কোন অগ্রগতি জানতে পারেননি। দুদক চেয়ারম্যান বলেছেন, "আমরা গত বছরই বাংলাদেশ ব্যাংককে লিখেছিলাম, ভারত যেমন একটা সমঝোতা স্মারক করেছে, যার মাধ্যমে তারা সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকের সাথে তথ্য বিনিময় করে থাকে। আমরাও বাংলাদেশ ব্যাংককে পত্র দিয়েছিলাম সুইস ব্যাংকের সাথে তথ্য বিনিময়ের সমঝোতা করার জন্য। আজকেও আমি আমার অফিসকে বলেছি যে, একটা রিমাইন্ডার দেন যে কী করলো তারা?" তবে তথ্য জানার জন্য সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকের সাথে সমঝোতার চেষ্টায় এক বছরেও যে কোন অগ্রগতি হয়নি, বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে সেই ধারণা পাওয়া যায়। অর্থ পাচার বন্ধের জন্য গঠিত বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রধান আবু হেনা মো: রাজি হাসান বলেছেন, সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে বাংলাদেশি যাদের টাকা জমা আছে, তাদের বেশিরভাগই বিদেশে থাকেন। "এর আগেও আমরা সুইস ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করে বা বিশ্লেষণ করে দেখেছি যে, ব্যক্তিগত যে অর্থ সেখানে জমা আছে, সেটাও কিন্তু যারা বিদেশে বা বাইরে আছেন, তাদের অর্থ। এটা নয় যে সব টাকাই মানি লন্ডারিং হয়ে গেছে। যাই হোক মেকানিজম যেগুলো করতে হয়, সেগুলো কিন্তু আমরা করছি।" বাংলাদেশে থেকে টাকা পাচার হয় বিভিন্ন উন্নত দেশে ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রধান আরও বলেছেন, "কিছু কিছু ক্ষেত্রে যেখানে মনে হয়েছে পাচারের বিষয় থাকতে পারে, কিছু কিছু চিহ্নিত করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেগুলো নিয়ে কাজ করছে। আরও কীভাবে এটা কমানো যায়, সে ব্যাপারে আমরা কাজ করছি।" কিন্তু পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান মনে করেন,অর্থ পাচার নিয়ে তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে দূর্বলতা আছে। "বিশ্বব্যাপী যে আজকাল টাকার চলাফেরা হচ্ছে আন্ডার গ্রাউন্ডে বা ওভার গ্রাউন্ডে, সেখানে আমাদের মতো একটা অর্থনীতি বা ব্যবস্থাপনার পক্ষে তা তন্ন তন্ন করে ফলো আপ করার ক্ষেত্রে কিছুটা দুর্বলতাও আছে।" অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতেই শুধু নয়, এখন কানাডা, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে অর্থ নিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। ফলে কঠোর বার্তা না থাকায় টাকা পাচার বন্ধ করা যাচ্ছে না। কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? বিশ্ব মহামারি শেষ হতে কতদিন লাগবে? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় করোনাভাইরাস নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে বাংলাদেশিদের পাচার করা অর্থের ব্যাপারে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে বিস্তারিত কোন তথ্য নেই। +text: নিপীড়নের শিকার হয়ে এমন লাখ লাখ রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশে আইসিসি এর আগে এ ধরণের একটি পর্যবেক্ষণ পেশ করার জন্য এদেরকে অনুমতি দিয়েছিলেন, তারপরই গত ১৮ই জুন আনুষ্ঠানিকভাবে এই ২৬ জন নাগরিকের পক্ষে দুজন এই পর্যবেক্ষণ জমা দিয়েছেন । বাংলাদেশের নাগরিকদের পক্ষে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসের (সিপিজে) নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার মনজুর হাসান ও সেন্ট্রাল উইমেনস ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. পারভীন হাসান আইসিসির ��� বিষয়ক অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে গত ১৮ই জুন আইসিসিতে ৪০ পৃষ্ঠার বিবরণসহ পর্যবেক্ষণ জমা দেন। আরো পড়ুন: রোহিঙ্গা নির্যাতন তদন্ত নিয়ে ঢাকাকে আইসিসির চিঠি অপরাধ আদালতে কি নেয়া যাবে মিয়ানমারকে? মিয়ানমার যেখানে আইসিসি'র সদস্য নয়, সেখানে কিভাবে তাদের এধরণের একটি অপরাধের জন্য তদন্ত ও বিচারের মুখোমুখি করা যাবে, তারই আইনগত ভিত্তি তুলে ধরা হয়েছে এই পর্যবেক্ষণে। এমন প্রশ্নের জবাবে লন্ডনের মিডলসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এবং ঢাকার ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মনজিদা আহমেদ বলেন, পর্যবেক্ষণে তুলে ধরা হয়েছে কোন কোন অপরাধ গুলো আইসিসি চাইলে আমলে নিতে পারে। এভাবেই জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর তিনি বলেন, "পর্যবেক্ষণে যা যা দেখানো হয়েছে তার মধ্যে লিঙ্গ ভিত্তিক অপরাধ, নিপীড়ন ও গণহত্যা আছে"। মনজিদা আহমেদ এই পর্যবেক্ষণটিতে আইসিসির কাছে যে আইনি মতামত তুলে ধরা হয়েছে, তার খসড়া তৈরির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মিয়ানমার যেখানে আইসিসি'র সদস্য নয় সেখানে কি করা সম্ভব? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন অপরাধগুলো শুরু হয়েছে মিয়ানমারে কিন্তু শেষ হয়েছে বাংলাদেশে। "সেটাকে তুলে ধরা হয়েছে যে বাংলাদেশ চাইলে এটা রেফার করতে পারে"। কিন্তু আইসিসি এই পর্যবেক্ষণকে গুরুত্ব দিয়ে পদক্ষেপ নিবে- তার সম্ভাবনা কতটুকু? জবাবে মনজিদা আহমেদ বলেন, এখানে অপরাধের যে প্রকৃতি সেগুলো পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে অপরাধগুলো প্রকাশ্যে হয়েছে। "আইসিসি এটাকে তার এখতিয়ারে এটা নিতে পারে"। কিন্তু নাগরিকদের উদ্যোগ আইসিসি আমলে নেয়ার নজির আছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, "আমরা আদালতকে কিছু জিনিস দেখিয়ে দিচ্ছি। প্রসিকিউটরই উদ্যোগ নিয়েছে"। এভাবেই দলে দলে রোহিঙ্গারা এসেছে বাংলাদেশে জানা গেছে, নাগরিকদের তরফ থেকে দেয়া পর্যবেক্ষণে তিনটি বিষয়ে ওপর মতামত দেয়া হয়েছে- এগুলো রোহিঙ্গাদের পালিয়ে আসার প্রেক্ষাপট ও এর পরের অবস্থা, মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা বিতাড়ন ও সংঘটিত অপরাধ ও বাংলাদেশের আইন কি বলছে। এ পর্যবেক্ষণে বিশেষ করে গত বছরের অগাস্টের পর আসা রোহিঙ্গাদের জবানবন্দী ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে রোহিঙ্গা হত্যাযজ্ঞই তুলে ধরা হয়েছে আইসিসিরি কাছে। এর মধ্যে আইসিসি বাংলাদেশ সরকারের কাছেও তাদের মতামত চে���়েছে এবং বাংলাদেশের তরফ থেকে মতামত পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: মিয়ানমারকে আগলে রাখছে চীন? যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষোভ বার্মাকে আইসিসিতে নিতে নিরাপত্তা পরিষদকে আহ্বান রোহিঙ্গা বিতাড়ন নিয়ে রুল চেয়েছেন আইসিসি কৌঁসুলি বার্মাকে আইসিসিতে নিতে নিরাপত্তা পরিষদকে আহ্বান রোহিঙ্গা মুসলিমদের যেভাবে গণহারে মিয়ানমার থেকে প্রতিবেশী বাংলাদেশে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে, সেটির ব্যাপারে তদন্ত এবং বিচারের এখতিয়ার দাবি করে দ্য হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসি-র কাছে একটি পর্যবেক্ষণ পেশ করেছেন বাংলাদেশের ২৬ জন বিশিষ্ট নাগরিক। +text: বৃদ্ধার পরিবারের সদস্যরা বলছেন, নির্যাতনের পর বাসার মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে গেছে অভিযুক্ত গৃহকর্মী। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার সকালে। পুলিশ বলছে, মঙ্গলবার রাতে একটি মামলা হওয়ার পর থেকেই অভিযুক্ত গৃহকর্মীকে ধরতে অভিযান শুরু করা হয়। বুধবার এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। ঢাকার মালিবাগের একটি বহুতল ভবনের একটি ফ্লাটে ঘটেছে এই নির্মম ঘটনা। পুরো ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। ভিডিওতে দেখা গেছে, এক তরুণী এক বৃদ্ধাকে উলঙ্গ করে লাঠি দিয়ে ক্রমাগত আঘাত করছে। বৃদ্ধা আর্তনাদ করছেন এবং এক পর্যায়ে তার মাথা দিয়ে রক্তপাত শুরু হয়। এক পর্যায়ে বৃদ্ধাকে দিয়ে আলমারি খুলিয়ে সেখান থেকে জিনিসপত্র নিয়ে জড়ো করতে দেখা যায় তাকে। নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র নিয়ে তাকে বাসা থেকে বেরিয়ে যেতেও দেখা যায়। আহত বৃদ্ধার বয়স ৭৫, তার ছেলে বিবিসি বাংলাকে বলেন, ''এক বছর আগে মাসিক ছয় হাজার টাকা বেতনে মেয়েটিকে বাসায় কাজে রাখা হয়েছিল। তার দায়িত্ব ছিল আমার বয়সী মাকে সেবাযত্ন করা।'' তাদের একটি বাসায় ভাড়াটিয়া হিসাবে মেয়েটি এসেছিল। সেখান থেকে পরিচয়ের সূত্রে তাকে বাসার কাজে রাখা হয়। ''আমাদের একবোন গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিল। আরেক বোন গিয়েছিল ব্যাংকের কাজে। এই সময় বাসা ফাঁকা পেয়ে সে প্রথমে আমার মাকে বাথরুমে নিয়ে গিয়ে গায়ে ঠাণ্ডা পানি ঢেলে আটকে রাখার চেষ্টা করে। যখন আমার মা বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসে, তখন তার হাঁটাচলা করার স্টিলের লাঠিটি দিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করে আলমারি খুলতে বাধ্য করে।'' বলছ��লেন বৃদ্ধার ছেলে। গৃহকর্মী যাওয়ার সময় বৃদ্ধাটিকে তালাবদ্ধ অবস্থায় ফেলে চলে যায়। ছেলে বলছেন তিনি মায়ের ঠিক ওপরের তলাতেই থাকেন। পরে মায়ের চিৎকার শুনে ওপরের তলা থেকে নেমে এসে তালা ভেঙ্গে মাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন। আরও পড়তে পারেন: তিরস্কারমূলক শব্দ যেভাবে জব্দ করে নারীকে ভালোবেসে বিয়ে, পরকীয়া-নির্যাতন সত্ত্বেও মানিয়ে চলা কোনটা ধর্ষণ, কোনটা নয়? বাংলাদেশের আইন কী বলে? ধর্ষণের শিকার নারীরা বিচার পান না যে সব কারণে তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃদ্ধার ছেলে বলছেন, বাসার নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সবগুলো কক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছিল, যাতে ঘরের সব কিছু রেকর্ড হয়ে থাকে। তার বড়বোন মাঝে মাঝে সেগুলো তদারকি করতেন। সেই ক্যামেরায় পুরো ঘটনার ভিডিও হয়েছে। ঢাকার বেসরকারি টিভি চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরে এই ভিডিওটি প্রকাশ হওয়ার পর তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরের প্রতিবেদক রাশেদ নিজাম বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ''একজন অপরাধ বিষয়ক প্রতিবেদক হিসাবে আমি অনেকবার অনেকরকম বীভৎস মৃতদেহের ছবি দেখেছি। কিন্তু এই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে যে ভয়াবহতা ফুটে উঠেছে, এমনটা আমি আর দেখিনি।'' মঙ্গলবার এই ঘটনায় পালিয়ে যাওয়া গৃহকর্মীর নামে শাহজাহানপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক রেজাউল করিম বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ''অভিযোগ পাওয়ার পর থেকেই আমরা তদন্ত শুরু করেছি। আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিকভাবে এই ঘটনার নজরদারি করছেন। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি আমরা মেয়েটিকে গ্রেপ্তার করতে পারবো।'' বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: হোয়াইট হাউজ থেকে আজ বিদায় নেবেন ট্রাম্প, শুরু হবে বাইডেন পর্ব প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শেষদিনে কাদের ক্ষমা করবেন সেদিকেই সবার নজর বাইডেনের শপথের দিন সৈনিকদের নিয়ে ভয়, দেখা হচ্ছে অতীত করোনাভাইরাস: টিকায় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলে বাংলাদেশে যা করা হবে বয়স্ক মাকে দেখভালের জন্য রাখা হয়েছিল গৃহকর্মীকে । ভাইরাল হওয়া এক সিসিটিভি ভিডিওতে দেখা গেল, ওই বৃদ্ধাকে নগ্ন করে চরম নির্যাতন চালিয়েছে সেই গৃহকর্মী। +text: রাবণের ভূমিকায় অভিনয়ের পোষাকে দলবীর সিং রামলীলায় অনেকদিন ধরেই অভিনয় করেন দলবীর সিং। তবে বন্ধুদের কথায় এবছ��� সেজেছিলেন রাবণ। এমনিতে ঘুড়ি তৈরির কাজ করেন, অভিনয়টা ছিল তার শখ। রাবণ-বধের ওই উৎসবের মধ্যেই হঠাৎ করে এসে পড়ে একটি দ্রুতগামী ট্রেন। তার নিচে পড়ে যান কিছুক্ষণ আগেই রাবণের ভূমিকায় অভিনয় করা দলবীর। আট মাসের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে তার। সেখানেই মারা যান তিনি। ওই দুর্ঘটনায় দলবীরসহ প্রায় ৬০ জন নিহত হয়েছে। তার ভাই বলবীর সিং বিবিসিকে জানিয়েছেন, "দাদা অভিনয় শেষ করে জনতার মধ্যে ঢুকে রাবণের কুশপুতুলের দিকে তীর ধনুক তাক করতে স্টেজ থেকে নেমে এসেছিল। তখনই ট্রেনটা চলে আসে। দাদা কয়েকজনকে লাইন থেকে টেনে সরাতে গিয়েছিল, কিন্তু ওর পা দুটো ট্রেনের তলায় পড়ে যায়।" রাবণ-বধের অভিনয় করার পরে বাস্তবিকই যে সেই অভিনেতার জীবন শেষ হয়ে যাবে, এটা এখনও মেনে নিতে পারছেন না তার মা, স্ত্রী আর ভাই। রাতভর বহু মানুষ নিজের আত্মীয়-বন্ধুদের খোঁজ চালিয়েছেন রেললাইনের ধারে ঝোপঝাড়গুলোতে। আলোর অভাবে মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়েই খোঁজ চালিয়েছেন তারা। রেললাইন জুড়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে শত শত চটি - জুতো আর রক্তের দাগ। অন্যদিকে হাসপাতালগুলোতেও বহু মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন প্রিয়জনের খোঁজে। কারও খোঁজ পাওয়া গেছে হাসপাতালের বেডে, কাউকে হয়তো আত্মীয়রা পেয়েছেন মর্গে। আবার সম্পূর্ণ অনাত্মীয়দের জন্যও রক্ত দিতে হাসপাতালে হাজির হয়েছিলেন বহু মানুষ। অমৃতসরের গুরুনানক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন কিমতি লাল। বিবিসির সঙ্গে কথা বলার মিনিট ১৫ আগেই জানতে পেরেছেন যে শুক্রবার সন্ধ্যার ঘটনায় মেয়ে অণু আর দেড় বছরের নাতনি নূরকে হারিয়েছেন তিনি। "ফাগওয়াড়া থেকে দশেরা উৎসব দেখতে নাতনিকে নিয়ে অমৃতসরে এসেছিল আমার মেয়ে। নূর আমার কোলেই ছিল। আমরা রেললাইনের ওপরে ছিলাম না, পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। বাজি পটকা ফাটা শুরু হতেই একটা ভাগ-দৌড় শুরু হয়। আমরা ওই হুড়োহুড়ির সময়েই পড়ে যাই। ট্রেনের তলায় চাপা পড়ি নি আমরা কেউ," বলছিলেন কিমতি লাল। আরো পড়তে পারেন: মহাকাশে এবার 'মেইড ইন চায়না' নকল চাঁদ! খাসোগজি হত্যার কথা স্বীকার করেছে সৌদি আরব কোন গান বা সুর মাথায় গেঁথে যায় কেন? ওই হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছেন স্বপ্না। বোনের সঙ্গে দশেরা উৎসব দেখতে এসেছিলেন। বোনের মৃত্যু হয়েছে আর স্বপ্না মাথায় চোট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তিনি জানাচ্ছিলেন, "যেখানে রাবণ জ্বালানো হচ্ছিল, আমর��� তার থেকে অনেকটা দূরে ছিলাম। রেললাইনের পাশে একটা এল ই ডি স্ক্রিন লাগানো ছিল, আমরা সেটাই দেখছিলাম। তিনটে ট্রেন গিয়েছিল এর আগে। সবাই সরে গিয়েছিল লাইন থেকে, কিন্তু এই ট্রেনটা যে আসছে, আমরা কেউ বুঝতেই পারি নি। হঠাৎই চলে এলো।" কিমতি লাল স্বপ্নার মতো আরও অনেক প্রত্যক্ষদর্শীই বিবিসিকে জানিয়েছেন যে ট্রেনটি আসার আগে কোনও হর্ন বাজায় নি, গতিও একটুও কমানো হয় নি। কেউ সরে আসার সময়ই পান নি। রেল কর্তৃপক্ষ দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে। উত্তর রেলওয়ের মুখপাত্র দীপক কুমার জানিয়েছেন, "ঘটনাটা একটা লেভেল ক্রসিংয়ের কাছে হয়েছে। এর আগে হাওড়া-অমৃতসর এক্সপ্রেস ট্রেন ওই জায়গা দিয়েই পেরিয়েছিল। ওই সময় জলন্ধর থেকে অমৃতসর আসছিল একটি ট্রেন। তার জন্য লেভেল ক্রসিংয়ের গেট বন্ধ ছিল। হঠাৎই সেখানে একটা স্ট্যাম্পেড হয়। বহু মানুষ রেললাইনের ওপরে চলে আসেন।" "রেললাইনের পাশে যে এরকম একটা অনুষ্ঠান হচ্ছে, তার জন্য রেলওয়ের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয় নি। তবে কার দোষে এই ঘটনা, সেটা তদন্তের পরেই বোঝা যাবে।" ট্রেনের চালককে আটক করা হয়েছে লুধিয়ানা স্টেশনে। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরে পুলিশের কয়েকটি সূত্র বলছে যে তিনি জানিয়েছেন, ওই জায়গায় পৌঁছানোর আগে একটি মোড় রয়েছে লাইনের ওপরে। গোটা এলাকা এত ধোঁয়ায় ভর্তি ছিল যে তিনি বুঝতেই পারেন নি লাইনের ওপরে এত মানুষ জড়ো হয়ে রয়েছেন। আগে থেকে তার কাছে কোনও সতর্কবার্তাও ছিল না। অনেকেই বলছেন, অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন যারা, দায় তারাও এড়াতে পারেন না। দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখছে পুলিশ। ঘটনাস্থলটি ঘুরে দেখা গেছে, ওই মাঠের প্রধান প্রবেশ পথের কাছে মঞ্চ তৈরি হয়েছিল। আর সাধারণ মানুষের যাতায়াতের জন্য রেললাইনের ধারে একটি পাঁচিল ভেঙ্গে তৈরি হয়েছিল পথ। রেললাইনের ওপরে কোন আলোরও ব্যবস্থা ছিল না। আবার রেললাইনের কাছেই একটা বড় এল ই ডি স্ক্রিন লাগানো হয়েছিল, যার ফলে মানুষ রেললাইনের দিকে পেছন ফিরে দাঁড়িয়ে সেদিকেই মনোযোগ দিয়েছিলেন। হাজার হাজার মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে যে কোনও চিন্তা-ভাবনাই করেন নি অনুষ্ঠানের আয়োজকরা, সেটা স্পষ্ট। দুর্ঘটনার পর থেকেই খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না আয়োজকদের। এরা কংগ্রেস দলের স্থানীয় নেতা-কর্মী বলেই পরিচিত। এ নিয়ে আয়োজকদের অপদার্থতার কথা বলতে শুরু করেছে রাজ্যের বিরোধী দলগ��লি। সরকার ইতিমধ্যেই পূর্ণ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করতে সময় দেওয়া হয়েছে চার সপ্তাহ। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ'টায় যখন অমৃতসরের জোড়া ফটক এলাকার দশেরা উৎসবে রাবণের কুশপুত্তলিকায় আগুন দেওয়া হল, তার কিছুক্ষণ আগেই শেষ হয়েছিল রামলীলা। উত্তর ভারতে দশেরার দিন রামায়ণের কিছু অংশ অভিনয় করে দেখানো হয় এই রামলীলায়। +text: মিলিয়ন ডলার খরচ করেও হয়তো যা মেলেনা তা মিলবে বাজেটের ভেতরে থেকেই। আবার নিত্যদিনকার এমন কিছু সাদাসিধে ব্যাপার আছে যা হয়তো একজন মানুষের জীবনকে সুখী, স্বস্তিকর এবং সুন্দর করে তুলতে পারে। ঘরকে সবুজময় করে তোলা ঘরের ভেতর গাছপালা স্ট্রেস কমিয়ে দেয় এবং সুখকে বাড়িয়ে দেয়। কিভাবে? ঘরকে করে তুলুন যতটা সম্ভব সবুজ মৌলিক যে বিষয়টি সবাই জানানে যে, গাছ কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে অক্সিজেন ছাড়ে যা আমাদের বেঁচে থাকার শক্তি। কিছু কিছু গাছ বায়ুকে বিশুদ্ধ করতে সাহায্য করে কারণ তারা বায়ু থেকে ক্ষতিকর রাসায়নিককে টেনে নেয়। শরীরের পানির মাত্রা ঠিক রাখা শরীর ও মনের সু্স্থতার জন্য দারুণ কিছু করতে চাাইলে দিনে বেলা প্রচুর পানি পান করেত হবে। মানুষের শরীরের প্রধান উপাদান পানি। প্রাপ্তবয়স্ক একজন নারীর শরীরে ৫৫ শতাংশ এবং পুরুষের শরীরে ৬০ শতাংশ কার্যক্ষমতার জন্য পানি প্রয়োজন। সেকারণে শরীরে পর্যাপ্ত জলীয় থাকলে সুস্বাস্থ্য, শক্তির মাত্রা বাড়া এবং মনোযোগের শক্তি বাড়ে। আরও পড়তে পারেন: বাংলাদেশের মানুষ কি অসুখী হয়ে উঠছে? সুখী হওয়ার পাঁচটি উপায়: অধ্যাপকের পরামর্শ পরীক্ষায় ভালো করার চাপে কি শিশুরা আত্মঘাতী হচ্ছে? যদি প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে বিস্বাদ মনে হয় তাহলে তার সাথে লেবু বা শসা কিংবা আদার টুকরো মেশানো যেতে পারে। এমনকি পানি খাওয়ার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে না পারলে তাদের জন্য ইন্টারনেট অ্যাপসও আছে যার মাধ্যমে পানি পানের জন্য রিমাইন্ডার পাঠানো হবে। নিজের কক্ষের নতুন সাজ-সজ্জা আমরা আমাদের ঘর-বাড়ি কিভাবে সাজাই, সেটা আমাদের মেজাজের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে, সেইসাথে কতটা ঘুমাই এবং আমাদের এনার্জি লেভেল কেমন তাতেও প্রভাব ফেলে। যদি আপনি সেখানে নতুন রূপ দিতে চান তাহলে শোবার ঘর থেকে শুরু করুন। মুক্ত বাতাসের জন্য জানালা খুলে দিন, যতটা সম্ভব দিনের আলো ঘরে ঢোকার ব্যবস্থা রাখুন। পরিষ্ক���র রাখুন কাপবার্ডের সবকিছু এবং বিছানার তলা পরিচ্ছন্ন রাখুন। সাদাসিধে রাখুন শোবার ঘর যদি আপনি একে এক ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যেতে চান তাহলে গুরুত্ব দিতে পারেন চীনের প্রাচীন ফেং শুই পদ্ধতিকে। সেজন্য বইপত্র ঘাঁটাঘাঁটিও করতে পারেন। ফেং শুই দিয়ে বোঝানো হয় বায়ু ও পানি। ফেং শুইতে 'চি' নামের সর্বজনীন শক্তিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। বলা হয়, মানবশরীরের অভ্যন্তর ও বাইরে এই শক্তিই সমস্ত কাজকে নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে ফেং শুই এর এই সূত্র মানুন বা নাই মানুন এটি অনুসরণ করে অন্তত দারুণ রুম লে-আউট পাওয়া যেতে পারে। বাড়িতে তুলির আঁচড় বাড়ির দেয়ালের রং মানুষের মুড বা মন-মেজাজের ওপর দারুণভাবে প্রভাব রাখে। সবুজ রং- প্রকৃতির প্রতিনিধিত্ব করে এই রং ঘরের ভেতর ভারসাম্য, সমন্বয় এবং শিথিলতা এনে দিতে পারে। নীল রং-একটি নান্দনিক গুণ সম্পন্ন রং। এটি প্রশান্তির এক অনুভূতি তৈরি করে এবং বিশ্রাম এনে দেয়, এ কারণে এই রং শোবার ঘরের জন্য সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ। তবে লাল রং এড়িয়ে যাওয়া উচিত কারণ তা আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসকে দ্রুত করে যা হার্ট-রেট এবং রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। পাখিদের গান শুনলে হয়তো কুউ-কুউ- শোনায়, কিন্তু লন্ডনের বিজ্ঞানীদের নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে, পাখীদের গান বা কিচির-মিচির শব্দ মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। স্বেচ্ছাসেবকদের একটি অ্যাপের মাধ্যমে তাদের মুড রেকর্ড করে রাখতে বলা হয়েছিল। এবং দেখা যায়, পাখীর গান, গাছপালা এবং আকাশ তাদের যে মানসিক প্রশান্তি এনে দিয়েছিল কয়েক ঘণ্টা সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও তার রেশ ছিল। যদি আপনার পক্ষে তৎক্ষণাৎ বেরিয়ে পড়া সম্ভব না হয় এবং প্রকৃতির মাঝে ডুব দেয়া সম্ভব না হয় তাহলে উপায়? বর্তমান ইন্টারনেটের যুগে সে ব্যবস্থাও অসম্ভব নয়। পাখীর কিছু গান বা শব্দ ডাউন-লোড করে ফোনে সেভ করে নিয়ে হেড-ফোন দিয়ে শুনুন। আর চোখ বন্ধ করে ভাবুন প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পাখির ডাক ইতিবাচক প্রভাব রাখে মানসিক প্রশান্তির ক্ষেত্রে। পোষা বিড়াল গবেষণা বলছে, বিড়াল পোষার ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। চার হাজারের বেশি আমেরিকান নাগরিকের ওপর দশ বছর ধরে চালানো গবেষণায় ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটার স্ট্রোক ইন্সটিটিউট ইন মিনেপলিস এর গবেষকরা দেখেছেন যে, বিড়াল পুষেছেন এমন ব্যক্তিদের অন্যদের তুলনায় হার্ট অ্যাটা���ে কিংবা স্ট্রোকে মৃত্যুর হার ৩০ শতাংশ কম ছিল। এমন একটি বিড়াল হতে পারে সঙ্গী হাসতে থাকুন নির্মল হাসি আমাদের পেশীগুলোকে আলগা করে, রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখে, নাইট্রিক অক্সাইড বের করে দেয়, যার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। হাসি স্ট্রেস হরমোন কমায় এবং শরীরের এন্ডোরফিন শিথিল করে যার ফলে আমাদের শরীর আরাম পায় এবং এটা প্রাকৃতিক ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে। এটা ঠিক যে, হাসি সত্যিকারভাবেই শ্রেষ্ঠ ওষুধ। যেসব বন্ধুদের সঙ্গ আনন্দ দেয় তাদের সাথে সময় কাটানো, কমেডি দেখা ইত্যাদি হতে পারে সুন্দর সময় কাটানোর উৎস। আর ততটা সামাজিক না হলে ভিডিও দেখা যেতে পারে। কাজের ক্ষেত্রে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দৃষ্টিভঙ্গি স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ যেমন- সুইডেন, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে এবং আইসল্যান্ড- বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশগুলোর অন্যতম। কাজের ক্ষেত্রে সুখী এবং উন্নতির জন্য বেশকিছু কৌশল অনুসরণ করে থাকে সেখানকার মানুষেরা। সুইডেনে একটি রীতি প্রচলিত আছে যা ফিকা নামে পরিচিত, যার ফলে প্রতিদিন কফি ও কেক খাওয়ার জন্য বিরতি নিতে হয় যখন কলিগরা একত্র হন। তারা হয়তো কফির পাত্র নিয়ে বসে এবং সাথে থাকে কিছু ঘরে বানানো খাবার। কর্মক্ষেত্রে ফিকা একধরনের অবশ্য পালনীয় রীতি। নিজের সব কষ্টকে হাসি দিয়ে চ্যালেঞ্জ জানানো যায়। পর্যাপ্ত ঘুম সুস্থতা এবং ভাল থাকার জন্য খাবার এবং ব্যায়ামের মতো মানসিক এবং শারীরিক বিশ্রাম খুব গুরুত্বপূর্ণ। ঘুম কম হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়। স্ট্রেস হরমোন লেভেল বেড়ে যায়, উদ্বেগ এবং বিষণ্ণতা দেখা যায়। আমরা যখন ঘুমাই তখন আমাদের শরীরের ভেতর নানা কাজ চলে। ঘুম এনে দিতে পারি স্থিরতা ভাল ঘুমের জন্য পরিশ্রম দরকার। শোবার ঘরকে পরিষ্কার এবং নীরব রাখা দরকার, রাতে দেরি করে খাওয়াও বন্ধ করতে হবে। সেইসাথে সব ধরনের ডিভাইসের আলো যাতে না থাকতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে কারণ ফোন বা ট্যাবলেট দিয়ে বেরনো সামান্য নীল আলোও আপনার ঘুম চোখ থেকে কেড়ে নিতে পারে। দিনের শেষভাগে ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় বাদ দিতে হবে-এটাই তার সময়। শরীর ও মনের সুখ-শান্তির জন্য বহু টাকা খরচ করে ইয়োগা ক্লাস, ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট, ব্যয়বহুল স্পা অথবা স্বপ্নের দেশে লম্বা অবকাশ-যাপন- কোনটাই কার্যকর না-ও হতে পারে। +text: ইতিবাচক বৈষম্যও নয় বরং দরকার মেধা ও যোগ্যতাক��� মূল্যায়ণ করা এটি 'হোয়াই সো মেনি ইনকমপিটেন্ট মেন বিকাম লিডারস' বইয়ের লেখক ও মনোবিদ ড: টমাস চামোরো পিরেমুজিক এর মন্তব্য। নারীদের জন্য নেতৃত্ব পর্যায়ের পদগুলোতে উঠে আসা কেন কঠিন তা নিয়েও মি: টমাস তাঁর বইয়ে অনেক যুক্তি-তর্ক দিয়েছেন। তাঁর যুক্তি: সমাজে আমরা পুরুষদের দৃষ্টিকোণ থেকে যোগ্যতাকে দেখতে ভালোবাসি কারণ এর জন্য তাদেরকেই আমরা পুরস্কৃত করতে চাই। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: যেভাবে শপথ নিয়েছিল ১৯৭১'এর মুজিবনগর সরকার টিকটক অ্যাপ ভারতে বন্ধ করে দেয়া হলো বাংলাদেশের পাট নিয়ে ভারত কিভাবে লাভ করছে? অযোগ্যতাই জয়ী হয় কেন ? মি: টমাস বলছেন, রাজনীতি বা ব্যবসায় নেতা পছন্দ করার ক্ষেত্রে আমরা বিবেচনাযোগ্য দায়িত্বশীলতার মুখোমুখি হই কিন্তু আমরা তাদের নির্বাচন করি -কিন্তু সেটা আমাদের প্রতিষ্ঠান বা দেশের জন্য ভালো না মন্দ তা যাচাই করা হয় না। "আমরা সিদ্ধান্ত নেই কিন্তু আমাদের হাতে পর্যাপ্ত তথ্য থাকে না যা দিয়ে বুঝা যায় যে এসব নেতারা ভালো করবেন কি-না। পরিণামে তাদের নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা আছে কি-না সেদিকে মনোযোগ না দিয়ে আমরা স্টাইল বা এমন বিষয়ের দিকে মনোযোগ দেই"। তাঁর মতে, "আমরা যোগ্যতার চেয়ে আত্মবিশ্বাসের ওপর বেশি দৃষ্টি দেই এবং প্রায় সময়েই আমরা জব ইন্টারভিউ বা টেলিভিশন বিতর্কের মতো অল্প সময়ের আলাপচারিতার ওপর ভিত্তি করেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি।" দ্বিতীয়ত: বিনয়ের চেয়ে ক্যারিশমা গুরুত্ব পায় বেশি। তৃতীয়ত: নেতাদের আমরা স্বার্থপরের মতো এমনভাবে মানতে শুরু করি যা সবচেয়ে উদ্বেগজনক। একই ভুল বারবার করার কারণ ও ভুল ব্যক্তিকে নির্বাচন করা। 'সম্ভবত আমরা আসলে সেরা ব্যক্তিকেই চাকুরীতে দেখতে চাই না' বলছেন মনোবিদ মি: টমাস। তাঁর মতে. অনেক সময় মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ স্বল্প মেয়াদী লক্ষ্য ঠিক করে। তাদের মন্তব্য থাকে 'এই ব্যক্তি সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে পারবে'। "প্রতিটি সংগঠন বা ব্যবসায় নেতৃত্বে যারা আছেন তাদের কাজের মূল্যায়ন হওয়া উচিত এভাবে যে তারা অধীনস্থদের বা টিমকে কতটা প্রভাবিত করতে পেরেছেন"। বলুন তো বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কে প্রমোশন পাবেন? চক্র ভাঙ্গা যায় কিভাবে? কোম্পানি বা ডেমোক্রেসি- অযোগ্য নেতাদের সরানোর কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বাতলে দিয়েছেন লেখক ও মনোবিদ ড: টমাস চামোরো পিরেমুজিক। ১. ভোটে হোক আ�� হায়ার করে আনা হোক, কয়েকটি বিষয় যত্ন সহকারে বিবেচনা করতে হবে। যেমন- যোগ্যতা, দক্ষতা, বিনয়, আত্ম সচেতনতা, সততা ও শেখার ক্ষমতা। ২. ধারণা নয় বরং তথ্য উপাত্তের ওপর নির্ভর করা। ৩. লিঙ্গ বৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে লিঙ্গকে নয় বরং মেধাকে গুরুত্ব দেয়া। ভালো নেতা হতে ভালো দক্ষতা অর্জন দরকার নারীরাই কি সমস্যার সমাধান ? "সমাধান হয়তো নারী নন বরং সমাধান হলো মেধা ও যোগ্যতাকে মূল্যায়নে সিরিয়াস হওয়া" বলছেন এই মনোবিদ। "একটি প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অনুযায়ী মেধা ও যোগ্যতা বিবেচনায় নিলে সেটি নারীদের জন্য বাধা তৈরি করবে না বরং পুরুষের চেয়ে নারীরাই তখন নেতৃত্বে বেশি উঠে আসবে।" "যখন নেতাদের প্রসঙ্গ আসে তখন যোগ্যতার বিষয়টিকে যতটা গুরুত্ব দেয়া উচিত ততটা আমরা দেই না-এটা ব্যবসা ও রাজনীতি দুই জায়গাতেই। " +text: সম্প্রতি বেড়ে যাওয়া বর্জ্যের বেশিরভাগই হচ্ছে সার্জিক্যাল মাস্ক, পলিথিনের হ্যান্ড গ্লাভস, সার্জিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভস, পলিথিন ব্যাগ এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার বোতল বলে একটি বেসরকারি সংস্থা জানিয়েছে। এনভায়রনমেন্ট এন্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) নামের সংস্থাটি বলছে, ২৬শে মার্চ থেকে ২৫শে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ১৪ হাজার ৫০০ টন স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ প্লাস্টিক বর্জ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব পণ্যের বেশিরভাগই হচ্ছে সার্জিক্যাল মাস্ক, পলিথিনের হ্যান্ড গ্লাভস, সার্জিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভস, পলিথিন ব্যাগ এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার বোতল। এসব বর্জ্যের বড় অংশ ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে, ৩০৭৬ টন। আরো পড়ুন: প্লাস্টিক দূষণের জন্য কারা বেশি দায়ী? আবর্জনার জঞ্জালে দম আটকে মরছে যে শহর বর্জ্য থেকে যেভাবে আয় করছেন ভারতীয়রা এসডোর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা বিবিসি বাংলাকে বলছেন, সার্জিক্যাল মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস সব কিছু বর্জ্যের সঙ্গে একত্রে মিশে যাচ্ছে। ফলে সেটা যেমন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হচ্ছে, সেই সঙ্গে যারা এসব বর্জ্য সংগ্রহ করছেন তাদের স্বাস্থ্যের জন্যও মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে। কিন্তু এই বিষয়ে কোন নজরদারি, নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। তাদের কোনরকম স্বাস্থ্য সতর্কতার ব্যাপার নেই। ''একদিকে একবার ব্যবহৃার্য প্লাস্টিক বর্জ্য বেড়ে যাচ্ছে, পাশাপাশি পরিছন্নতা কর্মীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে যাচ��ছে। '' ঢাকা নগরীতে কয়েক হাজার পরিছন্নতা কর্মী কাজ করেন। এসডো বলছে, এই পরিছন্নতা কর্মীরা আক্রান্ত হয়ে পড়লে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বড় একটি সংকট তৈরি হবে। 'পরিবেশের কথা চিন্তা করলে, আমরা এসব বর্জ্য যেখানে সেখানে ফেলছি। একসময় সেটা আমাদের খাদ্য চক্রে মিশে যাচ্ছে। কারণ ক্ষতিকর রাসায়নিক গাছপালা শুষে নেয়, পরবর্তীতে যা মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণী খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে। ফলে এখনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে এই পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে।'' বলছেন নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা। এসডো বলছে, পরিছন্নতা কর্মীরা আক্রান্ত হয়ে পড়লে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বড় একটি সংকট তৈরি হবে। বেসরকারি এই সংস্থাটি বলছে, এসব বর্জ্যের ফলে অ্যাজমা, ফুসফুসের রোগ, হৃদরোগে আগাম মৃত্যু, শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথা, ঝাপসা লাগা, চর্মরোগ, ফুসফুসের ক্যান্সার, কিডনি ও লিভারের সমস্যা, ব্লাডপ্রেশার, শিশুদের স্বল্পবুদ্ধি হওয়ার মতো সমস্যার তৈরি হতে পারে। এসডো তাদের গবেষণায় দেখতে পেয়েছে, এসব বর্জ্যের প্রায় ১২ দশমিক ৭ শতাংশ সার্জিক্যাল ফেসমাস্ক, ২৪ দশমিক ২ শতাংশ পলিথিনের তৈরি সাধারণ হ্যান্ড গ্লাভস, ২২ দশমিক ৬ শতাংশ সার্জিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভস এবং ৪০ দশমিক ৮ শতাংশ খাদ্যদ্রব্য বহনের একবার ব্যবহারযোগ্য পলিথিনের বাজারের ব্যাগ। এই পরিস্থিতি বদলাতে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছে এই বেসরকারি সংস্থাটি। তার মধ্যে রয়েছে: কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? বিশ্ব মহামারি শেষ হতে কতদিন লাগবে? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় করোনাভাইরাস নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশে একবার ব্যবহার করা প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থা। +text: বৃহস্পতিবার থেকে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা করতে দুই পক্ষেরই ভিডিও কনফারেন্সে আলোচনা করার কথা। পাঁচ বছরব্যাপী যুদ্ধ থামাতে জাতিসংঘের প্রয়াসে সাড়া দিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হবে ব��ে বিবিসি জানতে পেরেছে। ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সেনা সমর্থিত জোটের অভিযান শুরু হয় ২০১৫ সালে। তবে হুতি বাহিনী এই যুদ্ধবিরতির শর্ত মানবে কিনা, তা এখনও পরিস্কার নয়। গতমাসে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস ইয়েমেনে অবস্থানরতদের আহ্বান জানান অতিসত্ত্বর যুদ্ধ থামাতে এবং করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিতে। দেশজুড়ে যুদ্ধকালীন সহিংসতা নিরসনের লক্ষ্যে জাতিসংঘের বিশেষ দূত মার্টিন গ্রিফিথসের সাথে সব পক্ষের সমন্বয় করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। বুধবার মার্টিন গ্রিফিথস যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "সব পক্ষকে এখন এই সুযোগ গুরুত্বের সাথে ব্যবহার করতে হবে এবং সব ধরণের সহিংসতা বন্ধ করতে হবে।" যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা করতে দুই পক্ষেরই ভিডিও কনফারেন্সে আলোচনা করার কথা। যুদ্ধবিরতিতে সব ধরণের বিমান, স্থল এবং নৌ সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়। যৌথবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়: "জাতিসংঘের দূতের চেষ্টায় এবং ইয়েমেনিদের দুর্ভোগ লাঘবের লক্ষ্যে ও করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় বৃহস্পতিবার থেকে শুরু করে দুই সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করছে জোট।" ইয়েমেনের পরিস্থিতিকে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছিল। ঐ যুদ্ধে অনেক বেসামরিক নাগরিক মারা গেছে এবং ইয়েমেনকে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ফেলেছে। হুতিদের মুখপাত্র মোহাম্মদ আব্দুসসালাম জানিয়েছেন তারা জাতিসংঘকে তাদের লক্ষ্য সম্পর্কে অবহিত করেছে। তারা চায় যুদ্ধ এবং ইয়েমেনের 'অবরুদ্ধ অবস্থা'র সমাপ্তি। আরো পড়তে পারেন: সৌদি আরবে কি পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে যে কারণে সৌদি আরব ছাড়তে চান অনেক তরুণী ইয়েমেন সংকট: কে কার সঙ্গে কেন লড়াই করছে? সমঝোতা সত্ত্বেও যুদ্ধ চলছে ইয়েমেনে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ইয়েমেনে চলমান ব্যয়বহুল সৌদি নেতৃত্বাধীন অভিযান শেষ করার পথে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ সৌদি আরবের এই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব। জোটের বিবৃতিতে উঠে আসে যে করোনাভাইরাসের আশঙ্কার কারণেই এই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব করা হয়েছে। সৌদি আরবের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার নাজুক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ��ছে। গত সেপ্টেম্বরে সৌদি আরবের তেল সম্পদের ওপর হামলা হওয়ার পরও হুতি নেতাদের সাথে গোপনে আলোচনা করার চেষ্টা করেছিল সৌদি কর্তৃপক্ষ। সেসময় হামলার দায় চাপানো হয় ইরানের ওপর। তবে গত কয়েকমাসে হুতি বাহিনী সেনা কার্যক্রম বাড়িয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া খবরে জানা যায় হুতি নেতারাও আলোচনা সাপেক্ষে যুদ্ধের সমাপ্তি চায়। কিন্তু একইসাথে সশস্ত্র যুদ্ধেও তারা পিছপা হতে চাচ্ছে না। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় আলোচনা শুরু হলেও ইয়েমেন সঙ্কটের রাজনৈতিক সমাধান পাওয়া কঠিন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের অভিযান স্থগিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। +text: উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দুই প্রধানমন্ত্রী অত্যাধুনিক দোতলা এই ভবনটিতে আছে একটি মিলনায়তন, জাদুঘর এবং গ্রন্থাগার। প্রায় ৪৬,০০০ বর্গফুট জায়গার এই ভবনে উদ্বোধনের আগের রাত পর্যন্তও কাজে ব্যস্ত ছিলেন বাংলাদেশ থেকে আসা শিল্পী আর কর্মীরা। জাদুঘরটি চালু হচ্ছে প্রায় ৪০০০ বর্গফুট এলাকা নিয়ে। পরে এটিকে আরও বড় করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। আর গ্রন্থাগারের জন্য বাংলাদেশ থেকে নিয়ে আসা হয়েছে প্রায় ৩৫০০ বই। এর মধ্যে অনেক বইই রবীন্দ্রচর্চা এবং রবীন্দ্র গবেষণা ভিত্তিক, যা ভারতে সহজলভ্য নয়। গ্রন্থাগার আর জাদুঘরটিতে রয়েছে অনেকগুলি ইন্টার অ্যাকটিভ, টাচ স্ক্রিন কিয়স্ক। রয়েছে রবীন্দ্রনাথের গান, কবিতা শোনার জন্য অডিও কিয়স্ক। বাংলাদেশ ভবন। ছাপানো বই ছাড়াও ডিজিটাল বইও পড়তে পারবেন পাঠকরা। জাদুঘরেই দেখা হয়েছিল ভবনটির কিউরেটর তারিক সুজাতের সঙ্গে। তিনিই জানালেন, জাদুঘরটিকে মূলত ৪টি জোনে ভাগ করা হয়েছে। শুরু হয়েছে উয়ারি বটেশ্বরে প্রাপ্ত ২৫০০ হাজার বছর পুরনো সভ্যতার নিদর্শন দিয়ে। শেষ হয়েছে ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ দিয়ে। মাঝের অনেকটা সময় জুড়ে এসেছে রবীন্দ্রনাথ প্রসঙ্গ। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন যেমন রয়েছে, তেমনই আছে অতি দুর্লভ কিছু ছবি, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষ��ত নানা প্রত্ন নিদর্শনের অনুকৃতি। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলির মধ্যে উয়ারি বটেশ্বরে প্রাপ্ত প্রত্ন নিদর্শন যেমন আছে, তেমনই আছে ৬ষ্ঠ-৭ম শতকের পোড়ামাটির কাজ, ১৬শ শতকের নক্সাখচিত ইট প্রভৃতি। রয়েছে পাহাড়পুর, মহাস্থানগড়ের নানা নিদর্শন, দেবদেবীদের মূর্তি। কোনটা পোড়ামাটির, কোনটি ধাতব। মাঝখানে সুলতানি এবং ব্রিটিশ শাসনামলও এসেছে জাদুঘরটিতে রাখা নানা প্যানেলে। রয়েছে ঢাকার জাতীয় জাদুঘর থেকে আনা বেশ কিছু মুদ্রা। "এই পর্যায়টি শেষ হয়েছে ১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময়ে। তারপরের বিভাগ শুরু হয়েছে ৫২-র ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে। মুক্তিযুদ্ধ কেন্দ্রিক যে বিভাগ, তার আগে ভাষা আন্দোলনের প্রসঙ্গটি এ কারণে রাখা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সূচনা তো সেই ৫২-তেই," বলছিলেন তারিক সুজাত। বাংলাদেশ ভবনের ভেতরে। আরও দেখুন: ২৩ বছরের যুবক মাদকাসক্ত থেকে যেভাবে ইয়াবা ব্যবসায়ী কিম জং-আনের কাছে লেখা চিঠিতে কী বলছেন ট্রাম্প? ফেসবুক কেন ব্যবহারকারীদের নগ্ন ছবি চাইছে? নানা প্যানেলে আর ছবিতে ধরা রয়েছে ১৯৫২-র ২১শে ফেব্রুয়ারি সকালে পাকিস্তানী সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যে ঐতিহাসিক মিছিল হয়েছিল, সেখানে গুলি চালনা আর ভাষা শহীদদের প্রসঙ্গ। "ঠিক তার পরের বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি যে সঙ্কলন বেরিয়েছিল, যেখানে 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো ২১শে ফেব্রুয়ারি', তোফাজ্জেল হোসেনের 'রক্ত শপথে আমরা আজিকে তোমারে স্মরণ করি'-র মতো কালজয়ী গানগুলি ছিল। রয়েছে সেই সঙ্কলনটির ছবি। তারপরে ৬২র ছাত্র আন্দোলন, ৬৬-র আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা - এসব পেরিয়ে ৭০ এর নির্বাচন প্রসঙ্গ রেখেছি প্যানেলগুলিতে," জানাচ্ছিলেন মি. সুজাত। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রয়েছে একটি আলাদা গ্যালারি।তাতে দেখা যাচ্ছে যুদ্ধের সময়কার নানা দুর্লভ ছবি, শরণার্থী শিবির এগুলি। রবীন্দ্রনাথ নিয়ে রয়েছে সম্পূর্ণ পৃথক একটি বিভাগ। পূর্ববঙ্গে সাজাদপুর, শিলাইদহ, পতিসরের কাছারীবাড়ির ছবি, সেখানে কবির ব্যবহৃত নানা জিনিষের অনুকৃতি দিয়ে সাজানো রয়েছে জাদুঘরের এই অংশটি। কয়েকটি ব্যবহৃত বস্তুও আনা হয়েছে সাজাদপুর থেকে - কেরোসিনের বাতি, লবণ দানি, খাবার পাত্র। এগুলি অবশ্য উদ্বোধনের পরেই ফেরত চলে যাবে বাংলাদেশে। মি. সুজাত বলছিলেন, "যেসব প্রত্ন নিদর্শন নিয়ে আসা হয়েছে, সেগুলি দীর্ঘমেয়াদী ঋণ হিসাবে বিশ্বভা���তীতে এসেছে। বেশ অনেক বছর থাকবে। চিরস্থায়ীভাবে দেয়া হয় নি। সরকারের সঙ্গে বিশ্বভারতীর মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী নিদর্শনগুলি এসেছে। ঠিক যেভাবে নানা যাদুঘরে প্রদর্শন বিনিময় হয় সারা পৃথিবীতেই। পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতীতে যে বাংলাদেশ ভবন তৈরি হয়েছে সেদেশের সরকারের অর্থানুকূল্যে, শুক্রবার সেটিরই উদ্বোধন করেছেন ভারত আর বাংলাদেশের দুই প্রধানমন্ত্রী - নরেন্দ্র মোদী এবং শেখ হাসিনা। +text: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সমানে অপরাজেয় বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের উল্লেখযোগ্য অংশই মনে করছেন এর ফলে প্রস্তাবটি চূড়ান্ত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিষয় বাছাইয়ের সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে যা বিশ্ববিদ্যালয় ধারণার সাথেই অসঙ্গতিপূর্ণ। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদের ডিনদের এক বৈঠকে উপাচার্য ড. মোঃ আখতারুজ্জামান ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে তিনটি ইউনিটে অর্থাৎ বিজ্ঞান, কলা ও ব্যবসা -এই তিন ইউনিটে পরীক্ষা নেয়ার প্রাথমিক একটি প্রস্তাব করেন। তার এ প্রস্তাব চূড়ান্ত হলে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ঘ ইউনিট ও চারুকলার চ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কিন্তু এ প্রস্তাবের যুক্তি কি বা কেন এমন প্রস্তাব তিনি করেছেন জানতে চাইলে উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান বিবিসি বাংলাকে বলেন, "আমি শুধু বলবো আলোচনার মাধ্যমে প্রস্তাবগুলো পরিশীলিত হবে এবং যেটি ভালো সিদ্ধান্ত হবে সেটিই আমরা গ্রহণ করবো। এর বাইরে আর কোনো মন্তব্য আমি করবোনা"। প্রসঙ্গত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকে ভর্তির ক্ষেত্রে উচ্চ মাধ্যমিকের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের ক ইউনিটে, মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের খ ইউনিটে এবং ব্যবসা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের গ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দিতে হত। আর উচ্চ মাধ্যমিকের বিভাগ পরিবর্তনের জন্য বিজ্ঞান, কলা ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ইউনিটে আবেদনের যোগ্যতা পূরণ সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের 'ঘ' ইউনিটে আবেদন করতে পারেন। ঘ ইউনিটে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা যারা এইচএসসিতে যে বিভাগে ছিলো তার পরিবর্তে সামাজিক বিজ্ঞানের আওতায় বারোটি বিষয় থেকে তার পছন্দনীয় সাবজেক্টে ভর্তির সুযোগ পেতে পারেন। অর্থাৎ বিজ্ঞান থেকে আসা শিক্ষার্থীরা মানবিক বা ব্যবসায় শিক্ষা��� বিষয়গুলোতে আবার ব্যবসায় থেকে আসা শিক্ষার্থীরা মানবিকের বিষয়গুলোতে আসার সুযোগ নিতে পারতেন। অপরদিকে উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান, কলা ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের যারা চারুকলা ভর্তি হতে চান, তাদেরকে চ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দিতে হত। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ধারণা এখন পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমানোর চিন্তা থেকেই ঘ ও চ ইউনিট বিলুপ্ত করার পরিকল্পনা এসেছে বলে মনে করেন তারা। যদিও চারুকলা ইন্সটিটিউটের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন বলছেন চারুকলায় পরীক্ষা হবেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল "পরীক্ষা ছাড়া চারুকলার বিকল্প নেই। দরকার হলে আমরা সব বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটগুলো একযোগে আলাদা গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার কথা ভাবতে পারি। তখন কি করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়," বলছিলেন মিস্টার হোসেন। মিস্টার হোসেন বলছেন ডিনস কমিটির বৈঠকে চ-ইউনিটের প্রসঙ্গই উঠেনি অথচ পরে সেটি গণমাধ্যমে এসেছে উপাচার্যের বরাত দিয়ে। তিনি বলেন, "আমাকে নিশ্চিত হবে যে চারুকলায় যিনি ভর্তি হবেন তার আর্ট কালচার নিয়ে আগ্রহ আছে এবং এগুলো নিয়ে তিনি জানার চেষ্টা করেন। আর সেটির একমাত্র উপায় পরীক্ষা নেয়া। ৭২ বছর ধরে তাই পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে"। প্রসঙ্গত গড়ে প্রতি বছর ১৫/১৬ হাজার শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় ভর্তি হওয়ার জন্য পরীক্ষা দিয়ে থাকে। বিতর্ক হচ্ছে সামাজিক বিজ্ঞানের ডি বা ঘ ইউনিট নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফেরদৌসি রেজা চৌধুরী এইচএসসিতে ছিলেন বিজ্ঞান বিভাগে কিন্তু পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘ ইউনিটে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে পড়াশোনা করেছেন দর্শনে । পরে আইনে পড়াশোনা করে আইন পেশায় যুক্ত হন। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলছেন, ডি ইউনিটের পরীক্ষা না থাকলে অসংখ্য শিক্ষার্থীদের জন্য এ সুযোগটাই বন্ধ হয়ে যাবে। প্রসঙ্গত ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত 'ঘ' ইউনিটের ১ হাজার ৫৬০ আসনের জন্য ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয় ৯৭ হাজার ৪৬৪ জন আর তার আগের বছর 'ঘ' ইউনিটে ১ হাজার ৬১৫ আসনের বিপরীতে মোট ৯৫ হাজার ৩৪১ জন প্রার্থী আবেদন করেছিলো। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে 'ঘ' ইউনিটের অধীনে বিভিন্ন অনুষদে ১,৬১০টি আসনের বিপরীতে এ বছর ৯৮ হাজার ৫৬টি আবেদন জমা পড়েছিলো, তবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ৭১ হাজার ৫৪৯ জন। সাদেকা হালিম বলছেন বিষয়টি মিটিংয়ের আলোচনার এজেন্ডাতেই ছিলোনা। কিন্তু উনি (উপাচার্য) তুলেছেন এবং উনার যুক্তি ছিলো চাপ (ভর্তিুচ্ছদের) কমাতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান "কিন্তু এর এর কোনো যৌক্তিকতা নেই। আমরা কোয়ালিটি রক্ষা করে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা করতে চাই। মনে রাখতে হবে এ সুযোগ চলে গেলে বিপুল সংখ্যক মেধাবীরা অন্য বিশ্ববিদ্যালয় বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে। অথচ আমরাই মাল্টি ডিসিপ্লিন গবেষণাকে উৎসাহিত করার অঙ্গীকার করেছিলাম," বলছিলেন সাদেকা হালিম। তিনি জানান তার অনুষদের শিক্ষকরা সভা করে একমত হয়েছেন যে তারা স্বতন্ত্র ইউনিটের মাধ্যমেই পরীক্ষা নিবেন এবং সামনে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় তিনি সেটিই তুলে ধরবেন। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি অনুষদের ডিনরা চান উচ্চ মাধ্যমিকের বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষার ভিত্তিতে তিনটি ইউনিটেরই পরীক্ষা হোক। আর সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ও চারুকলা অনুষদের পরীক্ষা কিভাবে এগুলোর সাথে সমন্বয় করে নেয়া হবে সেটি নিয়ে তারা আরও আলোচনার পক্ষপাতী। যদিও কলা অনুষদের ডিন দেলোয়ার হোসেনসহ বেশ কয়েকজন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি। যেসব জটিলতার আশংকা করা হচ্ছে শিক্ষকদের অনেকে বলছেন শুধু বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় বিভাগের ভিত্তিতে পরীক্ষা নিয়ে কিভাবে বিভাগ পরিবর্তন করা যাবে এবং তাতে মেধার বিচার কিভাবে হবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা। অন্যদিকে প্রতি বছর ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের যে অভিযোগ ওঠে তা থেকে নিষ্কৃতি পেতে পরীক্ষা ও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমিয়ে আনার চিন্তা কতটুকু কাজে দেবে তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। "প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানো কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। সেটার জন্য পরীক্ষা কমানো বা শিক্ষার্থীদের চাপ কমানোর যুক্তি হাস্যকর," বলছিলেন একজন শিক্ষক, তবে তিনি তার নাম না প্রকাশ করার অনুরোধ করেছেন। যদিও চারুকলার অধ্যাপক নিসার হোসেন মনে করেন পুরো বিষয়টির সাথে 'ষড়যন্ত্র' জড়িত আছে। "একটি অংশ চায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার স্বাতন্ত্র ও মূল্যবোধকে বিসর্জন দিক। তারাই শুধু নাম্বারের ভিত্তিতে ভর্তির সুযোগ দেয়ার কথা তোলেন। এটি হলে বিশ্ববিদ্যালয় অসাম্প্র্রদায়িক চেতনাই হারিয়ে ফেলবে," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি। ঢাকা বিশ��ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ঘ-ইউনিট ও চারুকলা অনুষদের চ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা থেকে সরে আসার পরিকল্পনা প্রকাশের পর এ নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে, বিভক্ত হয়ে পড়েছেন শিক্ষকরাও। +text: বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে একজন শিক্ষার্থীকে অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে হয় সেখানে মানবিক, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান- এই তিনটি বিষয়ের ওপর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সরাসরি ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যসূচির ওপর ভিত্তি করে প্রশ্নপত্র তৈরি করা হবে। ইউজিসির পরিচালক ড. শামসুল আরেফিন একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন। মঙ্গলবার ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সঙ্গে আলোচনার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে মঞ্জুরি কমিশন। এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে তিনটি গুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা একটি মাত্র পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। সেখানে পাওয়া স্কোরের ভিত্তিতে এবং চাহিদার ক্রমানুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবেন। ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, "এটা হচ্ছে যেমন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সেগুলো একসাথে ভর্তি পরীক্ষা নেবে। কৃষি, সাধারণ এবং প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তারাও এরকম একসাথে নেবে। এইভাবে চারটি গুচ্ছ পরীক্ষা হবে। এই চারটা ভাগের মধ্যে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও সামাজিক বিজ্ঞান এগুলোর জন্য তিনটি পরীক্ষা হবে।" তিনি বলছেন, "দেশে কত শিক্ষার্থী তার উপর নির্ভর করে কোথায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, কার কোথায় সিট পরবে সেগুলোও নির্দিষ্ট গ্রুপই ঠিক করবে। যেমন ধরুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যেরকম, তারা হয়ত তাদের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা নেবে।" বর্তমানে দেশে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তবে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৫৬টি। কৃষি বিষয়ক ৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে গতবছর স্নাতক শ্রেণিতে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষাতেও সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে থ��কে। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হবে: বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: স্কুল পর্যায়ের পাঠ্যসূচীতে নতুন তিন বিষয়ে কী পড়ানো হবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে ত্রিশ বছরের জেল - সুপ্রিম কোর্ট ভারতে ১৪ জন রোহিঙ্গা আটক, বাংলাদেশ থেকে যেভাবে তারা গেলো মোহসেন ফখরিযাদের ঘাতকরা 'নতুন ইলেকট্রনিক পদ্ধতি ব্যবহার করেছে' বাংলাদেশের ১৯টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বছরে গুচ্ছ পদ্ধতিতে তিনটি ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। +text: খৃস্টানরা বলছেন, মসজিদের ইমামের সহযোগিতা না পেলে তারা হয়তো আজ বেঁচে থাকতে পারতেন না। এই পরিবারগুলো পালিয়ে আসছিলো মূলত খৃস্টান অধ্যুষিত একটি প্রতিবেশী গ্রাম থেকে। পালিয়ে আসা এসব লোকজন জানান যে ৩০০ জনের মতো সশস্ত্র ব্যক্তি তাদের উপর শনিবার দুপুরের দিকে হামলা চালায়। সন্দেহ করা হচ্ছে, হামলাকারীরা গবাদিপশু পালক এবং তাদের বেশিরভাগই মুসলিম। গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেন যে আক্রমণকারীরা অকস্মাৎ তাদের গ্রামের ভেতরে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে এবং বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। হামলা থেকে যারা বেঁচে যেতে সক্ষম হয়, তারা প্রতিবেশী মুসলিম-অধ্যুষিত একটি গ্রামের দিকে পালিয়ে যেতে শুরু করেন। এই গ্রামেরই ইমাম তখন তাদেরকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। পালিয়ে আসা লোকজনকে তিনি একটি গোপন আশ্রয়ে নিয়ে যান। ২৬২ জনকে তিনি আশ্রয় দেন তার নিজের বাড়িতে এবং গ্রামের মসজিদে। তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। "প্রথমে আমি নারীদেরকে লুকিয়ে রাখার জন্যে আমার নিজের বাড়িতে নিয়ে যাই। তারপর পুরুষদের নিয়ে যাই মসজিদে," বিবিসিকে একথা বলেন ওই ইমাম। (নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এই ইমামের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। ছবিতে তার ও গ্রামবাসাীদের মুখও ঝাপসা করে দেওয়া হলো) হামলায় আহত এক শিশু। আরো পড়তে পারেন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বিরোধিতা করেছিলেন যারা শেষ হলো দুই মহারথীর বিশ্বকাপ যে ছয়টি কারণে ভুল করা ভালো নাইজেরিয়ার মধ্যাঞ্চলে প্রায়শই এধরনের হামলার ঘটনা ঘটে যেখানে যাযাবর পশুপালকরা স্থানীয় লোকজনের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। মূলত জমিজমা কিম্বা চারণভূমি দখল করা নিয়েই এই সংঘর্ষ ঘটে। একই সাথে এই অঞ্চলে দুটো গোষ্ঠীর মধ্যে ধর্মীয় উ���্তেজনারও সৃষ্টি হয়। পশুপালকরা জাতিগতভাবে ফুলানি গোষ্ঠীর, তাদের বেশিরভাগই মুসলিম আর অন্যদিকে খৃস্টানরা বেরম জাতিগোষ্ঠীর। এই অঞ্চলে এবছরেই জাতিগত সহিংসতায় শত শত লোক নিহত হয়েছে। এক গ্রুপের হামলা, তারপর প্রতিপক্ষ গ্রুপের প্রতিশোধ - এধরনের পাল্টাপাল্টি আক্রমণের ঘটনা ঘটছে গত কয়েক বছর ধরেই। ২০১৬ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নাইজেরিয়ায় জঙ্গি গোষ্ঠি বোকো হারামের হাতে যতো মানুষ নিহত হয়েছে, তার চেয়েও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে গবাদিপশুর চারণভূমি দখলের লড়াইয়ের কারণে। বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, গ্রামের ওই ইমাম যদি তখন পালিয়ে আসা খৃস্টানদের বাঁচাতে এগিয়ে না আসতেন তাহলে আরো বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটতো। কারণ সশস্ত্র ব্যক্তিরা তখন প্রতিবেশি এই গ্রামটিতেও পালিয়ে যাওয়া লোকজনের খোঁজে তল্লাশি চালিয়েছিল। স্বজনকে হারিয়ে শোকে কাতর একজন গ্রামবাসী। গ্রামবাসীদের একজন বলেন, "প্রথমে তারা একটি গ্রামে হামলা চালায়। তখন আমরা নিরাপত্তা চৌকিগুলোর দিকে দৌড়াতে শুরু করি। কিন্তু তখন তারা সেদিকেও গুলি চালাতে শুরু করে। তখন নিরাপত্তা বাহিনীর লোকেরাও আমাদের মতো এদিকে ওদিকে পালাতে শুরু করে।" আক্রমণকারীরা এখানেই থেমে যায় নি। যখন তারা জানতে পারে যে ইমাম গ্রামবাসীদেরকে একটি মসজিদের ভেতরে আশ্রয় দিয়েছেন, তখন তারা তাদেরকে মসজিদের ভেতর থেকে বের করে আনার জন্যে ইমামের কাছে দাবি জানাতে থাকে। কিন্তু মসজিদের ইমাম তখন তাদের দাবি অনুযায়ী কাজ করতে রাজি হন নি। শুধু তাই নয়, আক্রমণকারীদেরকে তিনি মসজিদের ভেতরে যাওয়ারও অনুমতি দেন নি। গবাদি পশুপালকরা তখন ইমামের বাড়ি ও মসজিদ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকে। বাদানুবাদের এক পর্যায় ইমাম সশস্ত্র ব্যক্তিদের সামনে মাটিতে শুয়ে পড়েন। তার সঙ্গে যোগ দেন স্থানীয় আরো কয়েকজন মুসলিম। মসজিদের ইমাম তখন কান্নাকাটি করতে শুরু করেন এবং হাতজোড় করে তাদেরকে সেখান থেকে চলে যাওয়ার অনুরোধ করতে থাকেন। এবং বিস্ময়কর হলেও, হামলাকারীরা তখন ইমামের কথা শুনে সেখান থেকে চলে যায়। কিন্তু যাওয়ার পথে তারা কাছেরই দুটো গির্জাতে আগুন ধরিয়ে চলে যায়। পরে ওই ইমাম বিবিসিকে বলেছেন, তিনি লোকজনকে এভাবে বাঁচাতে চেয়েছেন কারণ আজ থেকে ৪০ বছরেরও বেশি সময় আগে এই এলাকার খৃস্টানরা মুসলিমদেরকে এখানে মসজিদ ��ির্মাণের অনুমতি দিয়েছিল। "মুসলমানদেরকে তারা তাদের জমি জমা দিয়েছে, এজন্যে কোন টাকা পয়সা নেয়নি," বলেন তিনি। স্থানীয় আরেকজন মুসলিম নেতা বিবিসিকে বলেন, "তখন থেকেই আমরা এই বেরম গোষ্ঠীর লোকজনের সাথে বসবাস করছি কিন্তু শনিবারের হামলার মতো ঘটনা আমি কখনো দেখিনি।" হামলাকারীরা চলে যাওয়ার পর প্রাণে বেঁচে যাওয়া খৃস্টান গ্রামবাসীরা ইমামের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এরকম একজন বলেন, "তারা যখন আমাদেরকে মসজিদের ভেতরে নিয়ে গেল তারপর কেউই আমাদেরকে মসজিদ থেকে চলে যেতে বলেনি, তাদের জন্যে প্রার্থনা করতেও বলেনি। বরং তারা আমাদেরকে রাতের ও দুপুরের খাবার দিয়েছে। আমরা তাদের কাছ কৃতজ্ঞ।" পালিয়ে আসা গ্রামবাসীরা এরপর ইমামের আশ্রয়ে আরো পাঁচদিন অবস্থান করেন। তারপর তাদেরকে একটি ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ক্যাম্পে এখন ২,০০০ এরও বেশি লোক অবস্থান করছে। আর অন্যান্যরা আশ্রয় নিয়েছে তাদের আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের বাড়িতে। বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় হামলাকারীরা। নিজেদের গ্রাম থেকে পালিয়ে যারা প্রতিবেশী গ্রামের মসজিদে আশ্রয় নিয়েছিলেন তারা এখনও তাদের নিজেদের গ্রামের বাড়িতে ফিরতে পারছেন না নিরাপত্তার অভাবে। তাদের বাড়িঘরও ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় ফুলানি গোষ্ঠীর একজন নেতা বিবিসিকে বলেছেন, "হামলাকারীদের অনেকেই বিদেশি। আমরা যখন তাদেরকে মসজিদের ভেতরে যেতে বারণ করতে থাকি তখন তারা কয়েকজন বয়স্ক লোককে মারধর করে।" গ্রামের ৭০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি বলেন, "তারা আমার চার ছেলেমেয়েকে হত্যা করেছে। এখন আমাকে খাবার দেওয়ার মতো কেউ নেই।" গ্রামবাসীরা জানান, বাড়িতে আগুন দেওয়ার আগে হামলাকারীরা বড়িঘরে ও দোকানপাটে লুটপাট চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আক্রমণকারীরা এসময় 'আল্লাহু আকবর' বলে চিৎকার করতে থাকে। সেদিন রাত পর্যন্তও নিরাপত্তা বাহিনীর কোন ভূমিকা ছিল না। রাতের বেলায় সেফ হেভেন নামক সামরিক একটি টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা এসে লোকজনকে উদ্ধার করেন যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এই সহিংসতার পর ওই এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। নাইজেরিয়ার একজন ইমাম যখন তার গ্রামে শত শত ভীতসন্ত্রস্ত পরিবারকে গত শনিবার ছুটে আসতে দেখলেন, তখন তিনি তার নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদেরকে বাঁচাতে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। +text: যেমন ���েখতে এই খাবারের গুড়ো। তাদের দাবি এই খাবার তৈরিতে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন প্রায় শূন্যের কোঠায় থাকবে যদি এর জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সৌর অথবা বাতাস দিয়ে তৈরি হয়। এই বিজ্ঞানীদের স্বপ্ন যদি বাস্তব রূপ পায় তাহলে কৃষির মাধ্যমে বর্তমানে যেসব সমস্যা তৈরি হচ্ছে তা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। একদম স্বাদহীন এই প্রোটিন বিজ্ঞানীরা বলছেন ইলেক্ট্রোলাইসিস ব্যাবহার করে পানি থেকে হাইড্রোজেন আলাদা করা হয়। তারপর সেই হাইড্রোজেন, বাতাস থেকে নেয়া কার্বন ডাইঅক্সাইড ও খনিজ পদার্থ মাটিতে পাওয়া যায় এমন এক প্রকার ব্যাকটেরিয়াকে খাইয়ে প্রোটিন জাতিয় খাদ্য তৈরি করা হয়েছে। এর নাম দেয়া হয়েছে 'সোলেন' যা খেতে একদম স্বাদহীন। বিজ্ঞানীরা বলছেন তারা এমনটাই চেয়েছেন। এই প্রোটিন সরাসরি খাওয়া নয় বরং অন্য ধরনের খাবারের সাথে এটি যুক্ত করে পুষ্টিগুণ বাড়ানো যায়। এটিকে ব্যাবহার করে বিস্কুট, পাস্তা, নুডুল বা রুটি এমনকি কৃত্রিম মাংস বা মাছ তৈরি সম্ভব। এই প্রোটিন গবাদিপশুর খাবারও হতে পারে। প্রোটিন জাতিয় এই খাবার সয়া’র প্রতিযোগী হয়ে উঠতে পারবে। সায়েন্স ফিকশনের মতো ধারনা ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কি শহরের পাশে অবস্থিতি এই 'সোলেন' উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী কর্মকর্তা পাসি ভাইনিক্কা। যুক্তরাজ্যের ক্র্যানফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। তিনি বলছিলেন, এমন খাবার উৎপাদন প্রযুক্তির ধারনা প্রথম এসেছে ষাটের দশকে। মহাকাশযানে ব্যবহারের জন্য এমন প্রযুক্তির শুরু। তিনি স্বীকার করছেন যে তার কাজে কিছুটা পিছিয়ে আছেন। তবে আশা করছেন ২০২২ সালের মধ্যে তারা কাজ শেষ করতে পারবেন। আরো পড়ুন: তাপমাত্রা কমাতে মাংস কম খেতে হবে? কৃত্রিম মাংসের বার্গার, যা থেকে 'রক্ত' ঝরে নিরামিষভোজীদের খাদ্যভ্যাস স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় এই প্রকল্পের জন্য তারা তহবিল তৈরি করছেন। এখনো পর্যন্ত ৫৫ লাখ ইউরো যোগাড় হয়েছে। ফ্যাক্টরি পর্যায়ে সোলেন তৈরির কাজ তারা শুরু করতে চান ২০২৫ সালে। বিদ্যুতের দাম এখানে বড় একটি বিষয় বলছিলেন পাসি ভাইনিক্কা। তবে সৌর বিদ্যুৎ প্রযুক্তি যেভাবে সামনে এগোচ্ছে তাতে করে এর দাম হয়ত ভবিষ্যতে আরও কমে আসবে। ‘সোলেন’ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী কর্মকর্তা পাসি ভাইনিক্কা। তাই সোলেন উৎপাদনে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারেই তার আগ্রহ বেশি। এ�� বিজ্ঞানীরা যদি পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোতে পারেন তবুও বিশ্বের চাহিদা মেটানোর মতো বিশাল পরিমাণে এই প্রোটিন উৎপাদন সম্ভব হতে বহু বছর লেগে যাবে। আর তাছাড়া তাদের পরিকল্পনা ব্যর্থ হতে পারে। তবে কৃত্রিম খাবার তৈরির ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হওয়ার এটি একটি ধাপ বলা যেতে পারে। সায়েন্স ফিকশন সিনেমায় যেমনটা দেখেছেন একদিন হয়ত সেরমক কৃত্রিম মাছ, মাংস খাবে মানুষ। সয়ার সাথে যে কারণে তুলনা সয়া থেকে তৈরি প্রোটিন খুব উন্নত বলে ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে। যা মাংস বা মাছ জাতিয় প্রোটিনের বিকল্প হিসেবে ইতিমধ্যেই অনেক গ্রহণীয়। কিন্তু সয়াবিন উৎপাদনে ব্যাপক জমি ও পানি লাগে। যা শেষ পর্যন্ত পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এবং খরচের বিষয়। কিন্তু ব্যাকটেরিয়া বা অণুজীব দিয়ে প্রোটিন তৈরিতে দশভাগের একভাগ পানি লাগবে, জমির ব্যবহারও অনেক কম হবে। আর নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারলে এর এর উৎপাদন খরচ আরও কম হবে। গবাদিপশু থেকে আসা প্রোটিন উৎপাদন বৈশ্বিক উষ্ণতার অনেক বড় একটি উৎস। পৃথিবীর আয়ু কিছুটা বাড়বে? পরিবেশবাদী ক্যাম্পেইনার জর্জ মনবিয়ট পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ হতাশাবাদী। কিন্তু তিনি এই প্রোটিন উৎপাদনকারী প্রযুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, গবাদিপশু লালনপালন করে মাংস বা অন্যান্য প্রোটিন জাতিয় খাদ্য উৎপাদন করতে গিয়ে ব্যাপক পরিমাণে মিথেন গ্যাস তৈরি হয়। যা বৈশ্বিক উষ্ণতার অনেক বড় একটি উৎস। জর্জ মনবিয়ট বলছেন, "খাদ্য উৎপাদন করতে গিয়ে পৃথিবী শেষ হয়ে যাচ্ছে। মাছ ধরা এবং খামারগুলো পৃথিবীর বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র ধ্বংসের সবচেয়ে বড় কারণ। জলবায়ু পরিবর্তনেরও বড় কারণ এটি। "তবে আশার আলো যখন প্রায় নিভে যাচ্ছে এরকম একটি সময়ে এসে 'কৃষি বিহীন খাদ্য' উৎপাদন এই গ্রহ এবং তার মানুষকে রক্ষায় বড় সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে।" সাময়িকভাবে প্রোটিন জাতিয় খাবারের বদলে সবজি-জাতিয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস পৃথিবীর আয়ু কিছুটা বাড়াতে পারে বলে তিনি মনে করেন। অন্যান্য খবর: ইরানকে কখনই পারমানবিক অস্ত্র বানাতে দেবনা- ট্রাম্প 'আমেরিকার মুখে চড় মেরেছি': আয়াতোল্লাহ খামেনি কুদস ফোর্সে সোলেইমানির স্থলাভিষিক্ত হলেন যিনি 'বাতাস দিয়ে প্রোটিন জাতিয় খাদ্য' তৈরি করেছেন ফিনল্যান্ডের কিছু বিজ্ঞানী। তারা বলছেন, এই খাবার পুষ্���িগুণের দিক দিয়ে সয়া'র প্রতিযোগী হয়ে উঠতে পারবে। +text: যুক্তরাজ্যের গবেষকরা বলছেন, ঘ্রাণ না পাওয়া বা স্বাদ হারানো হয়তো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ হতে পারে। কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, যুক্তরাজ্যের এমন চার লাখের বেশি মানুষের মধ্যে একটি অ্যাপের মাধ্যমে এই গবেষণাটি করেছে কিংস কলেজ লন্ডন। তবে ঘ্রাণ না পাওয়া বা স্বাদহীনতা সাধারণ জ্বর-ঠাণ্ডা-কাশির মতো আরও অনেক ফুসফুসের জটিলতার ক্ষেত্রেও ঘটে থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ হচ্ছে জ্বর এবং কাশি হওয়া, যা দেখলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া উচিত। তারা বলছেন, যদি আপনার মধ্যে অথবা আপনি যাদের সঙ্গে বসবাস করেন, তাদের মধ্যে কিছুদিন ধরে কাশি বা জ্বর দেখা যায়, তাহলে তাদের উচিত বাড়ির ভেতরেই থাকা,যাতে তার করোনাভাইরাস হয়ে থাকলেও অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে না পড়ে। করোনা ভাইরাস: শত দুঃসংবাদের মাঝেও কিছু মন-ভালো করা খবর করোনাভাইরাস সম্পর্কে অজানা কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি মারা গেলে লাশ দাফনে ঝুঁকি আছে? করোনাভাইরাস নিয়ে যেসব ভিত্তিহীন পরামর্শে আদৌ কান দেবেন না নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন করোনাভাইরাসের উৎপত্তি কোথায়, কেন এতো প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরিতে অগ্রগতি কতদূর? গবেষণায় কি পাওয়া গেছে? কিংস কলেজের গবেষকরা চেয়েছিলেন করোনাভাইরাসের লক্ষণ সম্পর্কে যতটা সম্ভব তথ্য সংগ্রহ করা, যাতে বিশেষজ্ঞরা রোগটি সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারেন এবং ঠেকাতে লড়াই করতে পারেন। করোনাভাইরানের লক্ষণ শনাক্ত করার ওই অ্যাপটিতে রিপোর্ট করা মানুষজন যেসব লক্ষণ থাকার কথা বলেছেন, সেগুলো হলো: চার লাখের বেশি মানুষের মধ্যে ১৭০২ জন জানিয়েছেন যে, তাদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫৭৯ জনের মধ্যে ভাইরাসটি ধরা পড়েছে এবং ১১২৩ জনের মধ্যে রোগটি পাওয়া যায়নি। যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে পরীক্ষায় বেরিয়ে এসেছে, তাদের ৫৯% স্বাদ বা গন্ধহীনতার শিকার হয়েছেন বলে গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে। স্বাদ ও গন্ধহীনতা কী প্রধান লক্ষণ বলে ধরা উচিত? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত এখনো নেই। পাবলিক হেলথ ইংল��যান্ড এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের তালিকায় এই দুইটি বিষয় এখনো সংযোজন করেনি। যুক্তরাজ্যের যে সংস্থা নাক, কান ও গলা চিকিৎসকদের প্রতিনিধিত্ব করে, সেই ইএনটি ইউকে বলছে, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিছু রোগীর ক্ষেত্রে স্বাদ হারানো বা গন্ধহীনতার লক্ষণ দেখা গেছে, কিন্তু এগুলোকে এখনো নির্দিষ্ট করে কোভিড-১৯ রোগের সাথে সম্পৃক্ত করা যাচ্ছে না। কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষকরা বলেছেন, ঘ্রাণ হারানো বা স্বাদ হারানোর মতো বিষয়গুলো করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়ার অতিরিক্ত লক্ষণ হিসাবে দেখা যেতে পারে। হয়তো সেগুলোই একমাত্র লক্ষণ হিসাবে নয়,বরং কাশি ও জ্বরের পাশাপাশি সেগুলোও বিবেচনা করা যেতে পারে। এই দলের প্রধান গবেষক টিম স্পেকটর বলেছেন, ''আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, করোনাভাইরাসে যারা আক্রান্ত হয়েছেন, অন্যান্য লক্ষণের পাশাপাশি তিনগুণ হারে তারা স্বাদ বা গন্ধ নেয়ার ক্ষমতা হারিয়েছেন। ফলে এই ব্যক্তিদের উচিত অন্তত সাতদিনের জন্য স্বেচ্ছা আইসোলেশনে চলে যাওয়া, যাতে তারা আক্রান্ত হয়ে থাকলেও ভাইরাসটির বিস্তার না ঘটে।'' যুক্তরাজ্যের গবেষকরা বলছেন, ঘ্রাণ না পাওয়া বা স্বাদ হারানো হয়তো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ হতে পারে। +text: সড়কটিতে প্রায় দুশো গাছ রয়েছে শতবর্ষী। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত সচিব বেলায়েত হোসেন বিবিসিকে বলেছেন, যশোর রোড বরাবর নতুন মহাসড়ক নির্মাণ করতে হলে স্থানীয় জনসাধারণের ক্ষতি হবে। সেখানে জমির সঙ্কট রয়েছে। জমি অধিগ্রহণের ফলে বহু লোককে অন্যত্র সরিয়ে নিতে হবে, যা একটি কঠিন কাজ বলে তিনি বর্ণনা করেন। তবে গাছগুলোকে রেখে রাস্তা প্রশস্ত করা যায় কি না, সড়ক বিভাগ সেটি এখন বিবেচনা করে দেখছে বলে মি. হোসেন জানান। যশোর শহর থেকে বেনাপোল পর্যন্ত সড়কের দৈর্ঘ্য ৩৮ কি.মি.। এই রাস্তাটি সম্প্রসারণের প্রকল্পটি পাশ হয় ২০১৭ সালের মার্চ মাসে। সড়ক সম্প্রসারণের দু'পাশে থাকা গাছগুলো কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়া হলে শুরু হয় তীব্র প্রতিবাদ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এ পথেই পালিয়েছিলেন লাখ লাখ শরনার্থী। আরও পড়ুন: যশোর রোডের শতবর্ষী গাছগুলো কি বাঁচানো যাবে? ভারতে যশোর রোডের গাছ টিকেছে আদালতের রায়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের হিসেব অনুযায়ী এই রাস্তার দুই পাশে গাছ রয়েছে ২৩১২ টি। ��র মধ্যে দুশোর অধিক গাছ রয়েছে যেগুলোর বয়স ১৭০ বছরের বেশি। বেলায়েত হোসেন বলেন, ৩০% শতবর্ষী প্রাচীন গাছ মরে গেছে। এই গাছগুলো অপসারণ করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, এছাড়াও কিছু গাছ রয়েছে যেগুলো সড়কের ওপর চলে এসেছে এবং যার ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে। ওদিকে গত ১৮ই জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রিট আবেদনের প্রেক্ষাপটে ছ'মাসের জন্য গাছ কাটার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে। যশোর রোড কলকাতা থেকে যশোর পর্যন্ত বিস্তৃত। পেট্রাপোল থেকে কোলকাতা পর্যন্ত সড়কও চার লেন হচ্ছে। তবে সেখানেও গাছ কাটার ওপর আদালতের স্থগিতাদেশ রয়েছে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী যশোর রোডের প্রাচীন গাছগুলোকে রক্ষা করে নতুন মহাসড়ক নির্মাণ করতে হলে শুধুমাত্র জমি কেনা বাবদ ১০ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। +text: হিন্দু তীর্থক্ষেত্রগুলিতে হাজার হাজার বানর তীর্থযাত্রী জীবন একরকম অতিষ্ঠ করে তুলেছে। সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠতেই মেয়ের হাত থেকে টাকা ভর্তি ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে দৌড় দিল চোর। কয়েক সেকেন্ডের বিহ্বলতা কাটিয়ে উঠে বাবা ও মেয়ে তাড়া করলেন চোরকে। চেঁচামেচিতে ততক্ষণে বেরিয়ে এসেছেন ব্যাঙ্কের নিরাপত্তা কর্মীরাও। কিন্তু চোর ততক্ষণে টাকার ব্যাগ নিয়ে ওপরের তলায় পৌঁছে গেছে। তাকে তাড়া করা হচ্ছে বুঝে সে ব্যাগটি ছিঁড়ে ফেলে অনেকগুলো নোট ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিল। মি. বানসাল একতলায় নেমে এসে সেগুলো কুড়িয়ে নিয়ে গুনে দেখলেন প্রায় ৬০.০০০ টাকা। অর্থাৎ ১,৪০,০০০ টাকা নিয়ে হাওয়া হয়েছে সেই লুটেরা। পুলিশও খবর পেয়ে হাজির হল, কিন্তু তারা যে কোন আইনে এই লুটের ঘটনার মামলা দায়ের করবে, তা বুঝে উঠতে পারে নি। কারণ, ঐ ছিনতাইকারী তো আর মানুষ নয়। সে একটি বানর। বিজয় বানসাল বলছেন, "গোটা ঘটনা এত দ্রুত ঘটে গেল, যে কিছুই করতে পারলাম না। সারাজীবনের সঞ্চয় ছিল ওই টাকাটা। এখন তো আমি সর্বস্বান্ত হয়ে গেলাম।" উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বানরের উৎপাত রয়েছে ভয়াবহ রকমের। আরও পড়ুন: পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি এবং কম ধূমপায়ী দেশগুলো ভারতে মুসলমানদের অনেকেই অচ্ছুত 'ভারত স্থিতিশীল থাকলে বাংলাদেশ স্থিতিশীল থাকবে' দু'দিন আগে ঐ বানর লুটেরার হামলা হলেও স্থানীয় পুলিশ শুধু ঘটনাটি লিখে রেখেছে। কারণ এই লেজওয়ালা চোরের বিরুদ্ধে কোন ধারায় মামলা করা হবে, তা বুঝে উঠতে পারছে না তারা। মি. বানসাল সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছেও আর্জি জানিয়েছেন যদি কিছু ব্যবস্থা করা যায়। উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলেই বানরের উৎপাত রয়েছে ভয়াবহ রকমের। বিশেষ করে বারানসি বা মথুরা-বৃন্দাবনের মতো হিন্দু তীর্থক্ষেত্রগুলিতে হাজার হাজার বানর সেখানকার তীর্থযাত্রী আর নাগরিকদের জীবন একরকম অতিষ্ঠ করে তোলে। দুহাজার চৌদ্দ সালে মথুরায় গিয়েছিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী। সেখানকার বানরদের আবার বিশেষ নজর মানুষের চশমার ওপরে। প্রথমে নিরাপত্তার বাহিনী ভেবেছিল মি. মুখার্জীকে চশমা না পড়তেই অনুরোধ করা হবে। পরে অবশ্য রাষ্ট্রপতির ওপরে বানর বাহিনীর সম্ভাব্য হামলা আটকাতে নিয়োগ করা হয়েছিল প্রশিক্ষিত হনুমান বাহিনী। উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে মেরঠ অঞ্চলের প্রায় ২৫০০ ভোটযন্ত্র রাখা হয়েছিল এক পরিত্যক্ত কাপড় মিলের স্ট্রং-রুমে। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীর ওপরে বানর বাহিনীর সম্ভাব্য হামলা আটকাতে নিয়োগ করা হয়েছিল প্রশিক্ষিত হনুমান বাহিনী। ঐ পরিত্যক্ত কাপড়-মিলে কয়েকশো বানরের বসবাস। তারা ভোট যন্ত্রগুলো নষ্ট করে দিতে পারে, এই আশঙ্কায় প্রশিক্ষিত হনুমানদের বিশেষভাবে পাহারা দেয়ার জন্য রাখা হয়েছিল সেখানে। বারানসি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী এলাকা। সেখানকার সব গ্রামকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছিল সরকার। কিন্তু ইন্টারনেট সংযোগের জন্য প্রয়োজনীয় ফাইবার অপটিক কেবল দাঁত দিয়ে কেটে দিচ্ছিল বানরের দল। ভারতে ব্রজভূমি বলে পরিচিত মথুরা-বৃন্দাবনে বানরের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে গণ-হারে তাদের 'খোজা' করা বা প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট করে দেবার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মথুরার এমপি ও বলিউডের সাবেক গ্ল্যামার-কুইন হেমা মালিনী। তবে উত্তরপ্রদেশের বাইরে ওড়িশা রাজ্যে সম্প্রতি একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটিয়েছে একটি বানর। বাড়িতে ঢুকে একটি শিশুকে 'ছিনতাই' করে নিয়ে যায় একটি বানর। পরে ঐ শিশুটির মৃতদেহ পাওয়া গেছে একটি কুয়ার ভেতরে। আগ্রার ব্যবসায়ী বিজয় বানসাল মেয়েকে নিয়ে সবে ব্যাঙ্কে ঢুকতে যাচ্ছিলেন। মেয়ের হাতে ছিল একটা পলিথিন ব্যাগ, তার ভেতরে প্রায় দু'লক্ষ টাকা। +text: কাঠমান্ডুর নরভিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক বিমানযাত্রীর পাশে স্বজনেরা। কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তারা জানি��়েছেন, ওম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রিজওয়ানুল হককে উন্নত চিকিৎসার জন্য তার বাবা মোজাম্মেল হক বুধবারই সিঙ্গাপুরে নিয়ে গেছেন। আরেক জন যাত্রী, কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ (কেএমসি)-তে ভর্তি শাহরিন আহমেদকে নিয়ে তার ভাই লেফটেন্যান্ট কর্নেল সরফরাজ আহমেদ বৃহস্পতিবার দেশে ফিরবেন বলে কথা রয়েছে। বাকি পাঁচজন যারা হাসপাতালের ছাড়পত্র পেয়েছেন তারা হলেন: নরভিক হাসপাতালে ভর্তি ইয়াকুব আলী এবং কেএমসি-তে চিকিৎসাধীন মেহেদি হাসান, এমরানা কবির হাসি, সৈয়দা কামরুন নাহার স্বর্ণা ও আলমুন নাহার অ্যানি। কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশ হাই কমিশনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানান যাচ্ছে, ইয়াকুব আলী ও এমরানা কবির হাসিকে চিকিৎসার জন্য ভারতে নিয়ে যাওয়া হবে। বাকিদেরও বাংলাদেশে ফেরত নেয়ার ব্যাপারে প্রচেষ্টা চলছে। শোকে ভেঙে পড়েছেন অনেক স্বজন। আরও দেখুন: 'পরিবার চায়নি একমাত্র সন্তান পাইলট হোক' নেপালে ট্যুর বাতিল করছে আতঙ্কিত যাত্রীরা হকিং দেখিয়েছিলেন অচল শরীর কোন সমস্যা নয় আহত আরও তিনজন যাত্রীকে এখনও হাসপাতাল ত্যাগের ছাড়পত্র দেয়া হয়নি। মো. শাহীন ব্যাপারী কেএমসি-র বার্ন ইউনিটে এবং মো. কবীর হোসেন ও শেখ রাশেদ রুবায়েত আইসিইউতে ভর্তি আছেন। ওদিকে, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত বাংলাদেশিদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের একটি দল কাঠমান্ডু পৌঁছেছেন। এই দলে রয়েছেন: ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ, বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. লুতফর কাদের লেনিন, সহকারী অধ্যাপক ডা. হোসেন ইমাম, অধ্যাপক ডা. মনসুর রহমান, ডা. একেএম ফেরদৌস রহমান ও ডা. মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন। এছাড়া এই টিমে পুলিশের সিআইডি বিভাগের দু'জন কর্মকর্তাও আছেন বলে জানা যাচ্ছে। ঢাকা থেকে রওনা হওয়ার আগে ফোরেনসিক মেডিসিন বিভাগের ডা. সোহেল মাহমুদ জানান, মূলত নেপালের ডাক্তারদের সাহায্য-সহযোগিতা করতেই তারা কাঠমান্ডু যাচ্ছেন। নেপালের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বিধ্বস্তের ঘটনায় আহত ১০ জন বাংলাদেশির মধ্যে সাতজনকে হাসপাতাল ছাড়ার অনুমতি দিয়েছে। +text: ইয়াবা এখন বাংলাদেশে সবচেয়ে ভয়াবহ মাদক এই নিহতরা মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থী বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। পুলিশ বলেছে, নিহতদের সাথে প্রায় দুই লাখ ইয়াবা ছিল। গত বছরের মে মাস থেকে ইয়াবাসহ মাদক বিরোধী অভিযানে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে বন্দুক যুদ্ধে সন্দেহভাজন অনেকে নিহত হয়েছে। এরই মাঝে টেকনাফে একশ'র বেশি ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেছে। এরপরও সেখানে বন্দুক যুদ্ধে সন্দেহভাজনদের নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। তাহলে অবৈধ মাদক পাচারের বিরুদ্ধে সরকারের পদক্ষেপ কি প্রত্যাশা অনুযায়ী ফল পাচ্ছে না, এই প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞদের অনেকে। টেকনাফে সর্বশেষ কথিত বন্দুক যুদ্ধে দু'জন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বুধবার ভোররাতে। সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবি'র বক্তব্য হচ্ছে, মিয়ানমার থেকে নাফ নদী দিয়ে ইয়াবার একটি বড় চালান বাংলাদেশে ঢুকছে, এমন খবর পেয়ে বিজিবির টহল দল অভিযানে যায়।তখন সন্দেহভাজনরা গুলি ছুঁড়লে বিজিবি পাল্টা গুলি চালায় এবং গোলাগুলিতে প্রায় দুই লাখ ইয়াবা বহনকারী দু'জন রোহিঙ্গা নিহত হয়। যদিও গত ১৬ই ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে টেকনাফে এক সমাবেশে অবৈধ মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ১০২জন আত্মসমর্পণ করেছে এবং তারা কারাগারে রয়েছে। এরপরও সেখানে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে কথিত বন্দুক যুদ্ধে সন্দেহভাজনদের নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। ইয়াবা: আত্মসমর্পণ কৌশল কতটা কাজে লাগবে? অভিযোগ: মাদক বিস্তারের দায় এড়াতেই 'বন্দুকযুদ্ধ' বদির তিন ভাইসহ ১০২ ইয়াবা ব্যবসায়ীর আত্মসমর্পণ টেকনাফে আবারো কথিত বন্দুক যুদ্ধে সন্দেহভাজন মাদক পাচারকারী নিহত হবার ঘটনা ঘটেছে টেকনাফ থেকে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার শিউলি শর্মা বলছিলেন, ইয়াবাসহ মাদক পাচারকারী গডফাদাররা এখন কৌশল পাল্টিয়ে তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। "ইদানীং মেয়েদেরকে এখানে মাদক পাচারে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা নারীদের এই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। যারা ধরা পড়ছে, ওরা শুধু বহনকারী মাত্র।" অবৈধ মাদক ব্যবসায়ীদের একটা অংশের আত্মসমর্পণের ঘটনাকে সরকার বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটা বড় সাফল্য হিসেবে দেখানো হচ্ছে। তবে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এই আত্মসমর্পণের ঘটনার আগ পর্যন্ত মাদক বিরোধী অভিযানে কক্সবাজারে সন্দেহভাজন ৪৭ জন নিহত হয় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে বন্দুক যুদ্ধে। আর এরপর থেকে এ পর্যন্ত বন্দুক যুদ্ধে ১২জন নিহত হয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীদের অনেকের আত্মসমর্পণের পরও বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। তবে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন দাবি করেছেন, তাদের পদক্ষেপের কারণে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আসা অনেক কমেছে। "যারা আত্মসমর্পণ করেছে ১০২জন, এরা ছিল বড় মাপের ব্যবসায়ী। এখনও তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের অনেকে আত্মসমর্পণ করে নাই। তার বাইরেও আমরা আগে অনেক ব্যবসায়ীকে আইনের আওতায় আনতে পারিনি। তাদের ব্যাপারে তথ্য আমাদের কাছে কম ছিল।" "যারা আত্মসমর্পণ করেছে, তাদের কাছ থেকে আমরা অনেক তথ্য পেয়েছি, নতুন নতুন নাম পেয়েছি এবং এখানে তাদের একটা বড় সহযোগী ছিল হুন্ডি ব্যবসায়ী।তাদেরকেও আমরা চিহ্নিত করেছি। এখন যে ব্যবসাটা চলে, আপনি যদি পুলিশ সহ সব সংস্থার উদ্ধার দেখেন, তাহলে দেখবেন, এই রুট দিয়ে ইয়াবা প্রবেশ প্রায় ৮০ভাগ বন্ধ হয়েছে।" মিয়ানমার থেকে ইয়াবা পাচার হয়ে আসার প্রধান রুট হিসেবে কক্সবাজারের টেকনাফ এবং উখিয়াকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এই ইয়াবা চলে যাচ্ছে সারাদেশে। গত বছরের ৪ঠা মে থেকে ইয়াবাসহ অবৈধ মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। আর বন্দুক যুদ্ধে নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটনা ঘটতে থাকে ১৯শে মে থেকে। এই অভিযানে সারাদেশে এ পর্যন্ত বন্দুক যুদ্ধে ৩২১ জন নিহত হয়েছে, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হিসাবে তা জানা গেছে। মোট ৩২১ জন নিহত৩০৯ দিনে (১৯শে মে, ২০১৮ থেকে ২৭শে মার্চ, ২০১৯ পর্যন্ত) কক্সবাজারে ৫৯ জনএ পর্যন্ত নিহত ৪৭ জন নিহত১৬ই ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারে ১০২ জন আত্মসমর্পণের আগে ১২ জন নিহত১৬ই ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারে ১০২ জন আত্মসমর্পণের পরে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আত্মসমর্পণ বা অভিযান অব্যাহত রাখার ঘটনার পরও ইয়াবাসহ অবৈধ মাদক পাচার বা এর ব্যবসার প্রত্যাশা অনুযায়ী কমেনি। অবৈধ মাদক ব্যবসা এবং পাচার নিয়ে কাজ করেন অধ্যাপক এমদাদুল হক।তিনি বলছিলেন, সরকারের পদক্ষেপে ঘাটতি থাকার কারণে তা ব্যর্থ হচ্ছে। "একটা প্রতীকী আত্মসমর্পণ হয়েছে। অভিযানও চলছে।কিন্তু এর প্রভাবটা সেভাবে আসছে না। এটার জন্য সামগ্রিকভাবে যে লড়াই বা যে কমিটমেন্টের ব্যাপারটা,কোনো কিছুর ছাড় না দেয়া।এটা প্রশাসনের ক্ষেত্রে হোক বা রাজনীতির ক্ষেত্রে হোক বা সিন্ডিকেটদের ক্ষেত্রে হোক যে কোনো ছাড় দিয়�� কাজ করা। এই প্রত্যয়ের ক্ষেত্রে কিছুটা ঘাটতি আছে। এর সুযোগ নিচ্ছে সিন্ডিকেটের লোকজন।" বিশেষজ্ঞরা এটাও বলছেন, কথিত বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা দিয়ে শুধু অবৈধ মাদক ব্যবসা বন্ধ করা সম্ভব নয়। কিন্তু মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দিন আহমেদ ব্যর্থতার অভিযোগ মানতে রাজি নন। তিনি উল্লেখ করেছেন, মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে। "বন্ধ তখন হবে, যখন মাদক ব্যবসায়ীরা বন্দুক ব্যবহার বন্ধ করবে। মাদক ব্যবসায়ীরা যেভাবে বন্দুক হস্তগত করেছে।তারা যদি বন্দুক ব্যবহার করে, তাহলে আত্মরক্ষার্থে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও এরকম কার্যক্রম করতে হয়।" তিনি আরও বলেছেন, "এটি আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি যে, এখন মাদক সহজে পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া যে হারে মাদকাসক্তি বেড়ে যাচ্ছিল। কেউ বলছেন ৩৬ লক্ষ, আবার কেউ বলছেন যে, ৭০ লক্ষ মাদকাসক্ত বাংলাদেশে তৈরি হয়েছিল। এটা বাংলাদেশের জন্য একটা বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি করছিল।সেখান থেকে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে আমরা মনে করি।" বাংলাদেশে কক্সবাজারের টেকনাফে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবি'র একটি টহল দলের সাথে কথিত বন্দুক যুদ্ধে সন্দেহভাজন দুজন মাদক পাচারকারী নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। +text: পশ্চিমা সিনেমা সৌদি আরবে বেশি জনপ্রিয়। গান থেকে শুরু করে সাজ সজ্জা আর খাবারের মেনু সব কিছুতেই ছিল আরবের ছোঁয়া। বিলাসবহুল এই হোটেলটির পুরোটাই ভাড়া নিয়েছিলেন যুবরাজ মোহাম্মেদ বিন সালমান। মিডিয়া মোঘল রুপার্ট মারডক আর ডিজনি সিইও বব আইগারের বাড়িতে ডিনারের দাওয়াত পাওয়ার সৌভাগ্য খুব কম লোকেরই জোটে। যুবরাজ মোহাম্মদের সম্মানে দেয়া সেই নৈশ ভোজে হলিউডের সবচাইতে ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। ডোয়েইন দা রক জনসনের মতো তারকা বিগলিত হয়ে তাকে নিয়ে টুইট করেছেন। সালমানের গাড়িবহর একেবারে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে চলেছে। আরো পড়ুন: সৌদি আরবে দুই সপ্তাহের মধ্যেই চালু হচ্ছে সিনেমা হল সৌদি যুবরাজ যে কারণে ইসরায়েলিদের মাতৃভূমির পক্ষে যুবরাজ মোহাম্মদের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রে সবাই খুশী নন। সে এক দারুণ জমকালো ব্যাপার। আর এর সবকিছুর কেন্দ্রে রয়েছে বিনোদনে সৌদি সরকারের হাজার হাজার কোটি ডলারের বিনিয়োগের পরিকল্পনা। যুবরাজ মোহাম্মদ আয়োজিত এক সম্মেলনে কয়েকটি বিষয় বারবার তুলে আনা ���চ্ছিলো। তার একটি হল পরিবর্তন। সম্প্রতি যুবরাজ মোহাম্মদের নেতৃত্বে এক নতুন সৌদি আরব নিয়ে প্রচারণা চলছে। সম্মেলনে বলা হচ্ছিলো সৌদি আরবের ৭০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর বয়স ৩০ এর নিচে। আর তারা বিনোদনের খোঁজে মরিয়া। দেশের বাইরে গিয়ে তারা বহু পয়সা খরচ করে। কিন্তু সৌদি আরব নিজের দেশেই তাদের সেই সুযোগ করে দিতে আগামী পাঁচ বছরে পশ্চিমা বিনোদনের আর গ্ল্যামারের জন্য দ্বার উন্মুক্ত করছে। সৌদি আরব বিনোদনে বিশাল বিনিয়োগ করছে এমন খবর বের হওয়ার পর থেকে হলিউড তার ভাগ পেতে উদগ্রীব হয়ে উঠেছে। নিউ ইয়র্কের সাবেক মেয়র ব্লুমবার্গের সাথে যুবরাজ মোহাম্মদ যুবরাজ মোহাম্মদ সম্মেলনে গিয়েছিলেন ফিল্ম স্টুডিও হিরো ভেনচারের প্রধান নির্বাহী রিক লাইখট। তিনি বলেন, "আমরা মার্ভেল কমিকস এর বিনোদন নিয়ে সৌদি আরব যেতে চাই। আশা করছি এ বছর শেষ হওয়ার আগেই সেই সুযোগ আমরা পাবো। যুবরাজ সালমান আমাদের জন্য এক দারুণ আয়োজন করেছেন" কিন্তু রাজপুত্র কথাটা শুনলেই রূপকথার দৃশ্য ভেসে উঠলেও সৌদি মোহাম্মদ একেবারেই তেমন কেউ নন,তার হলিউড ভ্রমণের পুরো সময়টা জাঁকজমকের পাশাপাশি এমন ক্যাম্পেইনও চলেছে। যুবরাজের আনুষ্ঠানিক বৈঠকগুলো যেসব যায়গায় হয়েছে সেইসব ভেন্যুর বাইরেই নারীবাদী ও যুদ্ধ বিরোধী সংগঠনগুলোকে যুদ্ধবিরোধী প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে দাঁড়িয়েছে। অ্যাক্টিভিস্টরা রীতিমতো ক্যালিফোর্নিয়া জুড়ে যুবরাজকে অনুসরণ করেছে। তারা গান গেয়ে গেয়ে বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের জানাতে চেয়েছে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের হামলায় ইয়েমেনে কিভাবে ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। ২০ লাখ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছে। যুবরাজের বৈঠকস্থলের বাইরে যুদ্ধবিরোধীদের ক্যাম্পেইন। খাবারের অভাবে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখে রয়েছে ইয়েমেন। আর সৌদি আরব যে অস্ত্র দিয়ে তাদের হামলা করছে তার একটি বড় অংশ ক্রয় করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে। অস্কার বিজয়ী শোরেহ আগদাশলু রয়েছেন এই ক্যাম্পেইনের সমর্থকদের মধ্যে। তিনি বলছেন, "ইরানের সাথে সৌদি আরবের যে অর্থহীন বিরোধ তার বলি হচ্ছে ইয়েমেনের হাজার হাজার মানুষ। এই বিরোধের জেরে বহু ইয়েমেনি তাদের বাবা মা সন্তান হারিয়েছে। বহু মানুষ ঘরছাড়া হয়েছে, জীবিকা হারিয়েছে। সৌদি যুবরাজ তার সংস্কার কাজ ইরান দিয়ে শুরু করলে ভালো হতো" তিনি আরো বলেন, "হলিউড রাজ���ন্যা আর রাজপুত্র খুব ভালবাসে। তারা নিজেরাই এমন রাজপুত্র রাজকন্যার জন্ম দেয়। যুবরাজ যেসব সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমরা আশা করি তিনি তা করে দেখাবেন। তার বয়স মোটে ৩২ বছর এবং সে খুবই উচ্চাকাঙ্ক্ষী। তার ক্ষমতা আর অর্থ দিয়ে তিনি অনেক কিছু করার সামর্থ্য রাখেন" সৌদি আরব সম্প্রতি দেশটিতে সংস্কার নিতিমালা হাতে নিয়েছে আর সেটির মুল নকশার পেছনে রয়েছেন যুবরাজ মোহাম্মদ। কিন্তু সিনেমা হল আর বিনোদন কেন্দ্র চালুর মাধ্যমে সৌদি আরব তার কট্টরপন্থী সামাজিক রীতিতে কতটা সংস্কার আনবে সেই প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে। বেভারলি হিলস, ক্যালিফোর্নিয়ার ফোর সিজনস হোটেলটি হঠাৎ করেই সৌদি আরবের ছোঁয়া লেগেছিল। +text: তবে দিনের শেষে দুই দেশের সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকের পর সেই বিরোধের অবসান হয়। এখন পরিস্থিতি সেখানে শান্ত বলেই জানা যাচ্ছে। গত মাসের ৫ তারিখে ভারত সরকার লাদাখকে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করার পর এই প্রথম দুই দেশের সেনাবাহিনী কোনও মুখোমুখি সংঘাতে জড়াল। এর আগেই লাদাখ অঞ্চলকে ভারতের কেন্দ্রীয় শাসনের অধীনে নেওয়ার সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে বেইজিং। লাদাখের যে প্যাংগং হ্রদের ধারে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, সেটি দুদেশের বর্তমান সীমান্ত বরাবর অবস্থিত। প্রায় ১৩৫ কিলোমিটার লম্বা এই সুদীর্ঘ হ্রদটি চীনের তিব্বত থেকে ভারতের লাদাখ পর্যন্ত বিস্তৃত। ভারত এই হ্রদের প্রায় এক তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। প্যাংগং লেকের বাদবাকি অংশ রয়েছে চীনের নিয়ন্ত্রণে। প্যাংগং লেক চীনের তিব্বত থেকে ভারতের লাদাখ পর্যন্ত বিস্তৃত প্যাংগং হ্রদের তীর ঘেঁষে ও হ্রদের বুকেও দুদেশের সৈন্যরা পায়ে হেঁটে বা স্পিডবোটে নিয়মিত টহল দিয়ে থাকে। দিল্লিতে 'দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া' পত্রিকা জানাচ্ছে, বুধবার সকালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যরা যখন লেকের ধারে রুটিন টহলদারি চালাচ্ছিল তখনই চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) ফৌজ তাদের বাধা দেয়। এর পরই দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে, দুদেশের সেনাদের মধ্যে হাতাহাতি পর্যন্ত হয়। দুপক্ষই বাড়তি ফৌজ চেয়ে পাঠায়, আর দফায় দফায় এই সংঘাত চলে বুধবার প্রায় সারাদিন ধরেই। সন্ধ্যায় প্রতিনিধি-পর্যায়ের বৈঠকের পর বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে 'ডিএসক্যালেট' ও 'ডিসএনগেজ' করা সম্ভব হয়েছে বলে ভারতের সাম��িক সূত্রগুলি জানিয়েছে। ভারত ও চীনের মধ্যে লাদাখে যে 'লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল' (প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা) সীমান্তের কাজ করে, দুপক্ষের মধ্যে তার ব্যাখ্যার তারতম্যের কারণেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি। দুবছর আগে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসেও ভারত ও চীনের সেনারা প্যাংগং লেকের ধারে এক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল। সেবারের ঘটনায় একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়ে, যাতে দেখা যায় দু'পক্ষের সেনারা পরস্পরকে লাথি ও ঘুষি মারছে বা এমনকি পাথরও ছুঁড়ছে। সেদিন ছিল ভারতের স্বাধীনতা দিবস (১৫ আগস্ট), আর তখন চীন-ভারত-ভুটানের সীমান্তে বিতর্কিত ডোকলাম উপত্যকায় দুদেশের সেনাদের মধ্যে উত্তেজনাও ছিল চরমে। দুবছর আগের সেই ঘটনাতেও দুদেশের ব্রিগেডিয়ার পর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠকের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বলিউডের 'থ্রি ইডিয়টস' সিনেমাটির সুবাদে ব্যাপক পরিচিতি পায় প্যাংগং লেক যে প্যাংগং হ্রদ নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে এত বিরোধ, সেটি ব্যাপক পরিচিতি পায় বলিউডে 'থ্রি ইডিয়টস' সিনেমাটির সুবাদে। এই ব্লকবাস্টার মুভিটির ক্লাইম্যাক্স দৃশ্যটির শ্যুটিং হয়েছিল প্যাংগং হ্রদের ধারে ভারতীয় অংশে। এই পার্বত্য হ্রদটির গাঢ় নীল জলের সৌন্দর্য দেখতে হাজার হাজার ভারতীয় পর্যটক প্রতি বছর লাদাখে আসেন, আর ভারতীয় সেনার তত্ত্বাবধানেই তাদের লেকটি ঘুরে দেখানোর ব্যবস্থা করে হয়ে থাকে। আরো খবর: ভারতের উত্তরতম প্রান্তে লাদাখের প্যাংগং হ্রদের তীরে বুধবার প্রায় সারাদিন ধরে ভারতীয় ও চীনা সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘাত হয়েছে বলে দিল্লিতে সামরিক সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। +text: সৌদি আরব পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে নারীরা গাড়ি চালাতে পারে না। দেশটিতে নারীর গাড়ি চালানোর উপর যে নিষেধাজ্ঞা ছিল সেটা তুলে নেওয়া হচ্ছে ২৪শে জুন। ফলে তারা খুব শীঘ্রই গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়তে পারবেন। ফলে সৌদি নারীরা এখন যেগুলো করতে পারেন: সৌদি আরবে সমাজকে আধুনিক করে তুলতে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান যেসব সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন তার অংশ হিসেবেই নারীদেরকে সেসব অধিকার দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সৌদি আরবে নারী হয়ে জন্ম নিয়ে সেখানে বসবাস করা এখনও খুব একটা সহজ কিছু নয়। বিবিসির সাংবাদিক মেঘা মোহান তার শৈশবে ছিলেন সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে। তিনি বলছেন, সেসময় তার মা যখনই স্বামীকে ছাড়া কোথাও যেতে চেয়েছেন তখনই তাকে তার পিতার কাছ থেকে লিখিতভাবে অনুমতি নিতে হতো। আরো পড়তে পারেন: প্রিয়াঙ্কার পর এবার এক মুসলিম লেখককে আক্রমণ চাঁদ দেখার বিষয়টি চূড়ান্ত হয় কীভাবে? বিশ্বকাপে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন যারা ২৪শে জুন থেকে নারীর গাড়ি চালানোর উপর নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে। সৌদি আরবে নারীরা এখনও যে পাঁচটি কাজ করতে পারেন না: ১. ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন না। একজন নারী হয়তো গাড়ি চালাতে পারবেন কিন্তু সেটি কিনতে পারবেন না। পরিবারের পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া একজন নারী এখনও তার নিজের কোন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন না। সৌদি আরবে অভিভাবকত্ব সংক্রান্ত যে ব্যবস্থা আছে তার কারণেই সেটা করা সম্ভব নয়। এর অর্থ হলো প্রত্যেক নারীর একজন করে পুরুষ অভিভাবক আছেন যিনি তার পক্ষ হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন। ২. পাসপোর্ট নিতে পারেন না অথবা বিদেশে যেতে পারেন না গাড়ি চালিয়ে হয়তো বিমান বন্দর পর্যন্ত যেতে পারবেন কিন্তু কোন পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া ওই নারী বিমানে উঠতে পারবেন না। ৩. বিয়ে করতে কিংবা তালাক দিতে পারেন না কাউকে বিয়ে করতে চাইলে পুরুষ অভিভাবকের কাছ থেকে এবিষয়ে অনুমতি নিতে হবে। ওই নারীর পাঁচ বছর বয়সী একজন ছোট ভাইও কিন্তু তার অভিভাবক হতে পারেন। ওই বিয়ে যদি ঠিকমতো চলতে না থাকে তখন কি হবে? বিবাহবিচ্ছেদ বা তালাকের জন্যেও ওই নারীকে তার স্বামীর অনুমতি নিতে হবে। ৪. কোন পুরুষ বন্ধুর সাথে বসে কফি খেতে পারেন না ম্যাকডোনাল্ডস বা স্টারবাক্স যেকোনো দোকানেই পরিবার এবং পুরুষদেরকে আলাদা আলাদা জায়গায় বসতে হবে। আর সকল নারীকে বসতে হবে পরিবারের জন্যে নির্ধারিত এলাকায়। যদি সেরকম না হয় তাহলে ওই নারীকে গ্রেফতারও করা হতে পারে। ৫. যা চাইবেন সেটাই পরতে পারেন না কোন নারী যখন জনসমক্ষে আসবেন তখন তার মুখ ঢাকতে হবে না। কিন্তু তার শরীর আপাদমস্তক ঢেকে রাখতে হবে। কোন নারী যদি সমুদ্রে সৈকতে বেড়াতে যান সেখানে বিকিনি পরার কোন সুযোগ নেই। মনে রাখতে হবে যে সৌদি আরবে গড় তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে একটা জিনিস বলে রাখা ভালো, সৌদি আরবে কোন কোন নারী হয়তো এখনও এ কাজগুলো করছেন। আর কোন নারী যদি বিদেশি হন কিম্বা খুব বেশি ধনী হন তাহলে তার পক্ষে এসব আইন ভঙ্গ করা সহজ�� আবার সরকার যদি চায় তাহলে এসব আইন পালনে তারা অত্যন্ত কঠোর হতে পারে। পারে কড়া শাস্তি দিতেও। তাই নারীরা যদিও খুব শীঘ্রই রাস্তায় গাড়ি চালাতে পারবেন তারপরেও সৌদি আরব পুরুষদের একটি দেশ। নারীদের জন্যে বিশ্বের সবচেয়ে রক্ষণশীল দেশগুলোর একটি সৌদি আরবে নারীরা এবার এমন একটি অধিকার পেতে যাচ্ছেন যেটা তারা উদযাপন করতেই পারেন। +text: পরবর্তী নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনেই হবে বলে জানিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। প্রায় দেড় বছর পর ঢাকায় এক সমাবেশ থেকে আলোচনার ভিত্তিতে নিরপেক্ষ সরকার গঠনসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মসূচি দিয়ে মাঠে নেমেছে দলটি। জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া শেষে আলোচনার ভিত্তিতে রূপরেখা তুলে ধরা হবে জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, আমরা একটা রূপরেখা দেব। "এখন আমরা যেহেতু এককভাবে দিতে পারছি না। আমরা যেহেতু জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। সুতরাং যারা এই জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার মধ্যে আছেন, আমরা সবাই মিলে একটা কমন ফর্মুলা দেব। যে নিরপেক্ষ সরকার বলতে আমরা কী বোঝাই। খুব শিগগিরই দেব।" কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বরাবরই বলে আসছে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আলোচনার কোন সুযোগ নেই। সংবিধান অনুযায়ী দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। মাহাবুব উল আলম হানিফ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ বলেন, "আমরা বারবারই বলেছি যে আমাদের দেশে সংবিধান নিয়ে অনেক কাঁটা-ছেড়া হয়েছে। বিনা কারণে সংবিধান নিয়ে টানা-হেচঁড়ার কোন প্রয়োজন নেই। এখন সংবিধান সংশোধনীর কোন যৌক্তিকতা নেই কোন সুযোগও নেই। আমরা এই সংবিধানের গাইডলাইন অনুযায়ী একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবো।" তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করে চাপের মধ্যে রয়েছে বিএনপি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, "সংবিধান সংশোধন করতে তো সরকার রাজী হবে না। রাজী না হলেও সমঝোতা তো হতে পারে। সমঝোতার ওপর ভিত্তিতে একটা নির্দলীয় সরকার হতে পারে। তারপরে সেই সরকারের বৈধতা আগামী সংসদে সংবিধান সংশোধন করে দেয়া যেতে পারে।" "নির্বাচনকালীন যেহেতু আমরা একটি দল আরেকটি দলকে বিশ্বাস করি না, যেহেতু আমরা নির্বাচনে দাঁড়ালে আমরা যারা সরকারের আছি আমরা নিজেরা জয়ী হওয়ার চেষ্টা করি, সেজন��য আমরা ক্ষমতার অপব্যবহার করি, আমরা পুলিশ এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে আমাদের পক্ষে রাখার চেষ্টা করি। প্রশাসন যাতে আমাদের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করে সেটার জন্য চেষ্টা করি। এগুলো আমাদের মধ্যে অবিশ্বাস সৃষ্টি করেছে।" মওদুদ আহমেদ, বিএনপি নেতা। আরো পড়তে পারেন: খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় নির্দলীয় মেডিকেল বোর্ড ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রচারণায় সাংবাদিকদের গুরুত্ব কেন? বিশ্বব্যাপী সাইবার হামলার একের পর এক অভিযোগ আসছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন এলেই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে বিতর্ক। ১৯৯৬ সালে আন্দোলনের মুখে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন হয়। ২০০১ সালে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর হলেও ২০০৬ সালে আবার নির্বাচনকে ঘিরে মুখোমুখি অবস্থান দেশে জরুরী অবস্থা নিয়ে আসে। ২০১৪ সালে ভোট বর্জন করে বিএনপি। আগামী নির্বাচনের জন্য সংসদ ভেঙ্গে নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাশেদা রওনক খান বলেন, "সংকট আমাদের সবসময়ই যেটা ছিল দুই দল দুই দলকে না বোঝা। সমঝোতার পথে না যাওয়া। আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে দেখেছি, কখনোই সংলাপের মাধ্যমে সুফল বয়ে আনে না। কিংবা একটা সফল সংলাপ হয়েছে এরকম উদাহরণ আমরা টানতে পারি না আমাদের বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে। "সেই জায়গায় যতক্ষণ পর্যন্ত দুই দলের একটা সমঝোতার জায়গা না আসবে, দুই দল এক যায়গায় একমত না হবে নির্বাচনকে ঘিরে ততক্ষণ পর্যন্ত এই সংকটটা থেকে যাবে। এই সংকট থেকে উত্তরণের সম্ভাবন খুব কম।" রাশেদা রওনক খান, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নির্বাচনকালীন সরকারের দাবিতে সংকট সমাধানের লক্ষ্যে শিগগিরই নিরপেক্ষ সরকারের একটি রূপরেখা প্রস্তাব তুলে ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। +text: ভারতের উত্তরাঞ্চলে বিশালাকার হিমশৈল ধসে নদীতে পড়ে অন্তত এগারো জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিখোঁজ রয়েছেন ১৪৫ জন। হিমবাহ বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের মতে, হিমালয়ের শুধু এই এলাকাটিতেই হাজারখানেক হিমবাহ রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্ঘটনার সবচেয়ে বড় কারণটি হতে পারে, তাপমাত্রা বাড়ার কারণে বিশালাকার বরফ খণ্ড ভেঙ্গে পড়েছে এবং এটি বিস্ফোরিত হয়ে বিপুল পরিমাণে পানি এসে নদীতে পড়েছে। একই কারণে তৈরি হয়েছে তুষারধস, যা বয়ে এনেছে বিপুল পরিমাণে কাদা ও মাটি। দেরাদুনের ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউট অব হিমালয়্যান জিওলজির অবসরপ্রাপ্ত হিমবাহবিদ ডিপি ধোবাল বলেন, "আমরা এগুলোকে বলি মৃত বরফ। কারণ হিমবাহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া এই বরফ সাধারণত পাথর ও মাটির চূর্ণ দিয়ে আবৃত থাকে।" "এমনটা হওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে কারণ তুষার ধসের সাথে বিস্তর পলিমাটিও নেমে এসেছে।" কোন কোন বিশেষজ্ঞ বলছেন যে, কোন তুষার ধসের হয়তো আঘাত করেছে কোন হ্রদে। আর এই আঘাতে হ্রদ বিস্ফোরিত হয়ে বিপুল জলরাশি আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে বন্যার সৃষ্টি করেছে। কিন্তু অন্যরা বলছেন, ওই এলাকায় এমন জলাশয় থাকার কোন তথ্য নেই। "কিন্তু আজকাল কত দ্রুত হিমবাহের হ্রদ তৈরি হচ্ছে সেটা জানাটা খুব মুশকিল," বলেন ডা. ধোবাল। আরো পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হিমালয়ের হিন্দুকুশ এলাকায় হিমবাহ ব্যাপকভাবে গলতে শুরু করেছে এবং হিমবাহের হৃদগুলো আশঙ্কাজনক হারে বিস্তৃত হচ্ছে। অনেক নতুন হ্রদও তৈরি হচ্ছে। (ফাইল ফটো) ২০১৩ সালে যখন উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথ এবং আরো কয়েকটি স্থান ব্যাপক বন্যার কবলে পড়ে। যখন এগুলোতে পানির উচ্চতা বিপদসীমায় পৌঁছায় তখন তা মানব বসতিসহ সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে নিচের দিকে বয়ে যায়। এ ধরণের কিছু ঘটনা এর আগেও ওই এলাকাতে ঘটতে দেখা গেছে। আরেকটি কারণ হতে পারে যে, তুষার ধস কিংবা ভূমিধসের কারণে নদীর মধ্যে হয়তো বাঁধ সৃষ্টি করেছে যার কারণে কিছু সময় পর পানির উচ্চতা বেড়ে তা হঠাৎ করেই বাঁধ ভেঙ্গে বেরিয়ে এসেছে। হিমালয় এলাকায় ভূমিধসের কারণে নদীতে বাধার সৃষ্টি করায় সেখানে সাময়িক হ্রদ তৈরি হয়। পরে সেগুলো হঠাৎ করে ভেঙ্গে গিয়ে মানব বসতি এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা যেমন সেতু কিংবা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ভাসিয়ে নিয়ে যায়। ২০১৩ সালে যখন উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথ এবং আরো কয়েকটি স্থান ব্যাপক বন্যার কবলে পড়ে তখন বেশ কিছু তত্ত্ব সামনে এসেছিল। ড. ধোবাল বলেন, "বেশ কিছু সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছিলাম যে বন্যার কারণ ছিল আসলে ছোরাবারি হিমবাহ হ্রদ থেকে হঠাৎ করে পানি বেরিয়ে আসা।" উত্তরাখণ্ডের কর্মকর্তারা বলেছেন যে, ধাওলিগঙ্গা নদীতে বন্যার পেছনের কারণ জানতে বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যে এলাকায় বন্যার ঘটনা ঘটেছে তার দুর্গমতার কারণেই এখনো পর্যন্ত কারো কাছে সুনির্দিষ্ট কোন জবাব নেই যে এটি কেন ঘটেছিল। +text: কাল থেকে লকডাউনে যা��ায়াতে মুভমেন্ট পাস নিতে হবে পুলিশ প্রধান বেনজির আহমেদ বলেছেন, অতি প্রয়োজনে বাইরে যাতায়াতের জন্য অবশ্যই মুভমেন্ট পাস প্রদর্শন করতে হবে। এর আগে সোমবার সরকারি যে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে তাতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়ার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। লকডাউন কার্যকর করতে সরকারের ১৩ দফা বিধি নিষেধে বলা হয়েছে, 'অতি জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত (ঔষধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনা, চিকিৎসা সেবা, মরদেহ দাফন বা সৎকার এবং টিকা কার্ড নিয়ে টিকার জন্য যাওয়া) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবার সংখ্যা ব্যাপক ভাবে বেড়ে গেছে এবং সোমবারও ৮৩ জন মারা গেছে এবং নতুন আক্রান্ত হয়েছে সাত হাজারের বেশি। এর আগে ৫ থেকে ১১ই এপ্রিল পর্যন্ত সীমিত বিধিনিষেধ দেয়া হলেও তা খুব একটা কার্যকর হয়নি। এখন বাংলাদেশ পুলিশ বলছে, সরকারের কাল থেকে কঠোর লকডাউন কার্যকর করতে সরকার যে নির্দেশনা দিয়েছে তা বাস্তবায়নে তারাও এবার কঠোর পদক্ষেপ নেবে এবং তার আওতায় 'মুভমেন্ট পাস' ছাড়া কাউকে বাড়ির বাইরে আসতে দেয়া হবে না। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: চেকপোস্টে থেমে যান, ফিরে আসুন, মৃত্যুদূত হবেন না: পুলিশ প্রধান লকডাউন অব্যাহত থাকবে বুধবার ভোর পর্যন্ত যে পাঁচটি কারণে ভেঙে পড়লো বাংলাদেশের 'লকডাউন' লকডাউন অকার্যকর হলে সেনাবাহিনী ও কারফিউর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের এই ওয়েবসাইট থেকে নিতে হবে পাস মুভমেন্ট পাস পেতে যা করতে হবে: অনলাইনে মুভমেন্ট পাস দেয়ার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে একটি ওয়েবসাইট (https://movementpass.police.gov.bd/) খোলা হয়েছে যা আজ মঙ্গলবার উদ্বোধন করেছেন মি. আহমেদ। পুলিশ জানিয়েছে, দেশের যে কোন নাগরিক এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কয়েকটি তথ্য সরবরাহ করে পাস সংগ্রহ করতে পারবেন। ওয়েবসাইটিটির উদ্বোধন করে পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজির আহমেদ বলেছেন ক্রান্তিকাল মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্য দরকার ও সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি বলেন, "সবাই ঘরে থাকবেন যাদের ঘরে থাকতে বলা হয়েছে সরকারি আদেশে। কিছু অতি প্রয়োজনে বের হতে লাগতে পারে, যেমন কাঁচাবাজার বা ঔষধ; সেজন্য মুভমেন্ট পাস চালু করছি। অনলাইন থেকে পাস নিয়ে মুভমেন্ট করবেন"। পুলিশ মহাপরিদর্শক বা আইজিপি বেনজীর আহমেদ (ফাইল ফটো) পুলিশ জানিয়েছে আবেদনকারীক�� ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে পাসের জন্য আবেদন করতে হবে। শুরুতে একটি মোবাইল নম্বর দিতে হবে এবং কোথা থেকে কোথায় যাবেন সেই তথ্য দিতে হবে। এরপর নির্দিষ্ট ফরমে কিছু তথ্য চাওয়া যাবে এবং তাকে এরপর ছবি দিয়ে আবেদন জমা দিতে হবে। পরে সাইট থেকেই পাসটি ডাউনলোড করা যাবে এবং চলাচলের সময় পুলিশকে এটি প্রদর্শন করতে হবে। এক একটি মুভমেন্ট পাস ব্যবহার করে সর্বোচ্চ তিন ঘন্টা বাইরে থাকা যাবে। প্রতিটি গন্তব্যে যাওয়া এবং ফিরে আসার জন্য দুটি মুভমেন্ট পাস সংগ্রহ করতে হবে বলে জানাচ্ছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে চলাচলের জন্য ১৪টি শ্রেণিতে 'মুভমেন্ট পাস' দেবে পুলিশ যার মধ্যে রয়েছে মুদি দোকানে কেনাকাটা, কাঁচা বাজার, ওষুধপত্র, চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত কিংবা কৃষিকাজ, ব্যবসা পণ্য পরিবহনের মতো বিষয়গুলো। মুভমেন্ট পাস সংগ্রহের ওয়েবসাইট উদ্বোধনের কিছুক্ষণ পর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চালু হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে এই ওয়েবসাইটে সোয়া এক লক্ষ আবেদন জমা পড়েছে। প্রতি মিনিটে জমা পড়ছে ১৫ হাজার। বিবিসির তরফ থেকে সরেজমিনে এই ওয়েবসাইট ভিজিট করে দেখা গেছে, ওয়েবসাইটটি কিছুটা ধীরগতির, তবে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই অনুমোদিত মুভমেন্ট পাস পাওয়া যাচ্ছে এবং তা ডাউনলোড করা যাচ্ছে। প্রথম দফায় লকডাউন খুব একটা কার্যকর করা যায়নি বেনজির আহমেদ আরো যা বলেন: পুলিশ মহাপরিদর্শক তার বক্তৃতায় প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়া এবং বাইরে কোন ধরণের আড্ডা দেয়া থেকেও বিরত থাকার আহবান জানিয়েছেন। "রাস্তাঘাটে আড্ডা দিবেন না। মুরুব্বী বা যুবকরা অনেক সময় আড্ডা দিতে পছন্দ করে। এগুলো পরিহার করতে হবে। বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হবেন না। অতি প্রয়োজনে বের হতে হলে মাস্ক পড়তে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে"। মি.আহমেদ বলেন, "কাল থেকে রাস্তাঘাটে বিনা প্রয়োজনে কাউকে দেখতে চাই না। প্রয়োজন আছে কিনা সেটা তাকেই জাস্টিফাই করতে হবে। কোনভাবেই পুরো বাংলাদেশকে আইসিইউতে পরিণত করা যাবে না। এক বা দুই সপ্তাহ কষ্ট করলে এবারও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো। দরকারে মুভমেন্ট পাস নিয়ে বের হবেন"। লকডাউন ঘোষণার খবরে অসংখ্য মানুষের ঢাকার ছাড়ার দিকে ইঙ্গিত করে আইজিপি বলেন, অবশ্যই অপ্রয়োজনীয় যাতায়াত বন্ধ করতে হবে। "গতবার প্রথম ওয়েভের সময় লাখ লাখ লোক গ্রামাঞ্চলকে আক্রান্ত করেছেন। এবারো অনুরোধ করা হয়েছিলো যে নিজ জায়গা ছাড়বেনা কিন্তু অনেকে ঢাকা ছেড়েছেন। যিনি ঢাকা ছেড়েছেন তিনি হয়তো পরিবার, চারপাশ অর্থাৎ কমিউনিটিকে আক্রান্ত করবেন। এগুলো নৈতিকভাবে অন্যায়"। তিনি বলেন এ ধরণের মুভমেন্ট থেকে বিরত থাকতে হবে। যারা গতকাল ও পরশু ফেরিঘাট দিয়ে, হেঁটে, দৌড়ে, ঠেলাগাড়ি দিয়ে বা যেভাবেই হোক বাড়ি গেছেন তারা ওখানেই থাকবেন। "গ্রামবাসী খেয়াল রাখবেন। যারা গেছেন তাদের অন্যদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা উচিৎ। উনি কিন্তু পুরো এলাকাকে আক্রান্ত করতে পারেন। সমাজে যারা আছেন তাদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে"। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি রোধে কাল বুধবার থেকেই শুরু হতে যাচ্ছে এক সপ্তাহের 'কঠোর লকডাউন' এবং এই সময়ে বাইরে বের হতে হলে অনলাইন থেকে 'মুভমেন্ট পাস' বা চলাচলের অনুমতি সংগ্রহ করতে হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। +text: সুদানের আইনে মেয়েরা মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারতো না, পুরুষদের সঙ্গে মিশতে পারতো না, উচ্চশিক্ষা এবং চাকুরিতে তাদের অধিকার খর্ব করা হয়েছিল। সুদানে গণতন্ত্রের জন্য যারা আন্দোলন করছেন তারা এসব পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। একই সাথে সরকার দেশটির ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরের দলকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে এবং দলটির সব সম্পদ জব্দ করেছে। মি. আল বশিরের দল এসব সিদ্ধান্তকে বেআইনি বলে বর্ণনা করেছে। তীব্র গণ আন্দোলনের মুখে তিন দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা ওমর আল বশির কয়েক মাস আগে ক্ষমতাচ্যুত হন। সুদানে ওমর আল বশির এবং তার দল ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টি যে কঠোর ইসলামী অনুশাসন জারি করেছিল, সেখানে ভিন্নমত প্রকাশের কোন সুযোগ ছিল না। এক্ষেত্রে সবচেয়ে কুখ্যাত ছিল একটি জন-শৃঙ্খলা আইন, যা দিয়ে মানুষের, বিশেষ করে নারীদের সামাজিক আচরণ নিয়ন্ত্রণ করা হতো। মেয়েরা মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারতো না, পুরুষদের সঙ্গে মিশতে পারতো না, উচ্চশিক্ষা এবং চাকুরিতে তাদের অধিকার খর্ব করা হয়েছিল। পুরুষদের মতো ট্রাউজার পরলে সেটার শাস্তি ছিল ৪০ ঘা চাবুক। আরো পড়তে পারেন: একজনের ব্যবহারে ইন্টারনেট সংযোগ ফিরল সুদানে সুদানে বহু বিক্ষোভকারীর প্রাণহানি, সঙ্কট বাড়ছে সুদান: মিসরের চেয়ে বেশি পিরামিড যে দেশে সুদানের নতুন প্রধানমন্ত্রী আবদাল্ল��� হামদক। সুদানে এই আইনটির প্রয়োগও ছিল বৈষম্যমূলক, রাজধানী খার্তুমে ধনী পরিবারের নারীরা ট্রাউজার্স পরে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের কিছু হতো না, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই আইনে শাস্তি পেতেন পিছিয়ে পড়া অঞ্চলের দরিদ্র নারীরা। সাবেক প্রেসিডেন্টের দল বিলুপ্ত সুদানের নতুন প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লা হামদক আজ শুধু নারীদের নিয়ন্ত্রণকারী আইনই বাতিল করেননি, একই সঙ্গে সাবেক প্রেসিডেন্টের দলকেও বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন। এই দলটি প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সংগঠন, সুদানে সমাজের প্রতিটি অংশ তারা নিয়ন্ত্রণ করতো। এখন এই দল বিলুপ্ত করার ফলে সুদানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা অনেক সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সুদানে সামনের কয়েক বছরের মধ্যে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এই অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনকে। আরো পড়তে পারেন: পেঁয়াজ: বাংলাদেশ কি পারবে ভারত-নির্ভরতা কাটাতে? অপারেশন গঙ্গাজল: যে নির্যাতনে স্তম্ভিত হয়েছিল ভারত জাপান কীভাবে এমন পরিচ্ছন্ন দেশ হয়ে উঠলো সুদানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এমন একটি আইন বাতিল করেছে, যার মাধ্যমে সুদানি নারীরা জনসমক্ষে কী করতে পারবেন বা কোন পোশাক পরতে পারবেন, সেসব পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করা হতো। +text: আইনি প্রক্রিয়া শেষে আজ মঙ্গলবার বিকেলের দিকে তিনি বরগুনা কারাগার থেকে মুক্তি পান। ১৬ই জুলাই থেকে তিনি কারাগারে আটক ছিলেন। মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন বলেছেন তার মেয়ে জামিনে মুক্তি পাওয়ায় তিনি খুশি। উনত্রিশে অগাস্ট আয়শার জামিন মঞ্জুর করে রায় দেন হাইকোর্ট। যে রায়ে বলা হয়, গণমাধ্যমে কথা বলা বা বক্তব্য না দেয়ার শর্তে বরগুনার আলোচিত রিফাত হত্যা মামলার অভিযুক্ত আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে জামিনে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাইকোর্ট। আয়েশার জামিন মঞ্জুর করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের পর তার আইনজীবি জেড. আই. খান পান্না বলেছিলেন, "মিন্নির বয়স, সে একজন নারী, তার সংশ্লিষ্টতা কতটুকু আছে এবং যে পদ্ধতিতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়েছে, ও মিন্নিকে আদালতে পেশ করার সময় তার পক্ষে যে কোন আইনজীবি ছিলেন না, এফআইআর এ তার নাম নেই এবং এ মামলার তিনি একমাত্র সাক্ষী- এসব বিবেচনায় নিয়ে তাকে মু্ক্তি দেয��া হয়েছে।" আদালত তার রায়ে বলে, "তদন্ত প্রক্রিয়া যেহেতু শেষের দিকে এবং এ অবস্থায় তদন্ত প্রভাবিত করার কোন সুযোগ নেই, তাই আমরা তার জামিন মঞ্জুর করলাম।" আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী। তিনিই এই মামলার প্রধান সাক্ষী। চাঞ্চল্যকর রিফাত হত্যা মামলায় বরগুনার পুলিশ মিন্নিকে গত ১৬ই জুলাই গ্রেফতার দেখায়। অথচ এর আগে এই হত্যাকাণ্ডের একজন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী হিসেবেই মামলায় নাম ছিল মিন্নির। এর আগে হত্যা মামলাটির বাদী, নিহত রিফাত শরীফের বাবা, আবদুল হালিম দুলাল শরীফ গত ১৩ই জুলাই এক সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন, তার পুত্রবধূ (মিন্নি) এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে তিনি সন্দেহ করেন। পুলিশ এই রিফাত হত্যা মামলায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে রোববার। সেই চার্জশিটে মিন্নিকে অভিযুক্ত দেখানো হয়েছে। সেই চার্জশিট গ্রহণ করা না করার প্রশ্নে শুনানি হবে ১৮ই সেপ্টেম্বর। বিবিসি বাংলায় সম্পর্কিত খবর পড়তে পারেন: বরগুনা হত্যাকাণ্ড: মাদক, রাজনীতি আর ক্ষমতার চক্র ব্যক্তিগত কারণেই খুন হয়েছে রিফাত, বলছে পুলিশ হত্যার ভিডিও থেকে নেয়া দৃশ্য। গত ২৬শে জুন সকালে বরগুনা জেলা শহরের কলেজ রোডে রিফাত শরীফকে তার স্ত্রীর সামনেই কুপিয়ে জখম করে একদল লোক। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। ঐ ঘটনার একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। ভিডিওতে দেখা যায় কয়েকজন অস্ত্রধারী রিফাতকে ধারাল অস্ত্রের উপর্যুপরি আঘাতে আহত করছে। আর ঘটনাস্থলে উপস্থিত মিন্নি তাদেরকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করছে। মিন্নি ছাড়া ওইসময় আর কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি ভিডিওতে। ওই হত্যাকাণ্ডের পরদিন টেলিফোনে বিবিসি বাংলাকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন মিন্নি। (সাক্ষাৎকারের ভিডিও দেখুন এখানে) অভিযুক্ত হামলাকারীদের একজন, যিনি এলাকায় 'নয়ন বন্ড' নামে পরিচিতি ছিল, পুলিশ তাকে আটক করে। পরে, পুলিশের সাথে কথিত 'বন্দুকযুদ্ধে' তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। ভিডিওতে দেখুন: বরগুনা হত্যাকাণ্ড কি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে? বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: 'শাড়ি' নিয়ে লেখা, সামাজিক মাধ্যমে তুলকালাম ৬১৭৪: সংখ্যাটি যে কারণে এত রহস্যময় 'আমার বান্ধবী চায়না আমি তাকে নগ্ন অবস্থায় দেখি' বরগুনার বহুল আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তাঁর স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা ওরফে মিন্নি দেড় মাসের ওপর কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। +text: মি: ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্ত পৃথিবীকে উত্তপ্ত গ্রহে পরিণত করবে বলে সতর্কও করে দিয়েছেন স্টিফেন হকিং। স্টিফেন হকিংয়ের ৭৫ তম জন্মদিন পালন উপলক্ষে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিবিসির সঙ্গে আলাপ করেন তিনি। বিখ্যাত এই বিজ্ঞানী বলেন, ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্ত ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। " আমরা গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের এমন এক পর্যায়ে আছি যা আরেকটু বেশি হলে সেখান থেকে ফিরে আসা সম্ভব নয়। ট্রাম্পের এমন ধ্বংসাত্মক সিদ্ধান্ত পৃথিবীকে আরেকটি ভেনাসের রূপান্তরিত করতে পারে, যেখানে থাকবে দুইশো পঞ্চাশ ডিগ্রি তাপমাত্রা এবং সালফিউরিক এসিডের বৃষ্টিপাত" বিবিসিকে বলেন স্টিফেন হকিং। জলবায়ু পরিবর্তনকে তিনি পৃথিবীতে বিদ্যমান 'সবচেয়ে বড় বিপদ' বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য তিনি পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও বলেন। "জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের বড় বিপদগুলোর মধ্যে একটি এবং এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিলে আমরা ক্ষতি রোধ করতে পারি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রমাণ অস্বীকার করে এবং প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বের হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প পরিবেশের ক্ষতি সাধনের মাধ্যমে আমাদের ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সুন্দর পৃথিবীটাকে বিপজ্জনক করে তুলেছেন।" এদিকে জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আলোচকদের প্যানেল আইপিসিসিতে পৃথিবীতে তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ও এর সম্ভাব্য ঝুঁকি গুরুত্বের তুলে ধরা হয়েছে। আইপিসিসি লেখকদের মতে- "জলবায়ু পরিবর্তনের সুনির্দিষ্ট মাত্রাটি (অচলাবস্থান বা অপরিবর্তনীয় অবস্থার সর্বোচ্চ মান) নিশ্চিত করতে অনিশ্চয়তা রয়েছে। কিন্তু পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমে বৃদ্ধি পেয়ে অচলাবস্থার দিকেই যাচ্ছে। যা মানুষ এবং প্রাকৃতিক কারণেই হচ্ছে।" আমরা কি কখনো আমাদের পরিবেশগত সমস্যা ও মানব সংঘাতের সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হতে পারবো? এমন প্রশ্নের উত্তরে স্টিফেন হকিং বলেন- "পৃথিবীতে আমাদের দিন হিসেবের।" "আমার মনে হয় বিবর্তন মানুষের মনের লোভ ও সহিংসতা জাগিয়ে তুলছে। মানব সংঘাত কমার কোনো লক্ষণ নে। যু��্ধক্ষেত্রে প্রযুক্তির বিকাশ এবং মারাত্মক অস্ত্রগুলো মানুষের জন্য ধ্বংসাত্মক হতে পারে যেকোনো সময়"। "মানবজাতির বেঁচে থাকার সবচেয়ে ভালো উপায় হতে পারে মহাকাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে স্বাধীনভাবে উপনিবেশ স্থাপন।" আরো পড়ুন: জাপান সাগরে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে উত্তর কোরিয়া আরবদের হটিয়ে যেভাবে ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল মাথার খুলি দিয়ে নির্মিত ভবনের সন্ধান মিললো মেক্সিকোতে 'আমি তাঁকে জীবিত, অক্ষত ফেরত পেতে চাই' স্টিফেন হকিং বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্যারিস চুক্তি থেকে নাম প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত পৃথিবীকে ধ্বংসের কাছে নিয়ে যেতে পারে। জলবায়ুর পরিবর্তন এমনভাবে ঘটতে পারে যে পরিস্থিতি হবে অপরিবর্তনীয়। +text: প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, একবার স্ট্রোকের পর যারা বেঁচে যাচ্ছে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি দ্বিগুণ। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, একবার স্ট্রোকের পর যারা বেঁচে যাচ্ছে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি দ্বিগুণ। এছাড়া এক বছরের মধ্যে আরো একবার স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হতে পারেন তারা। স্ট্রোকের ঝুঁকি বয়স্কদের বেশি আগে এমনটা ধারণা করা হলেও, সেটা এখন ভুল প্রমাণিত হচ্ছে। বাংলাদেশেও এখন প্রায় পাঁচ লক্ষ লোক স্ট্রোকে আক্রান্ত। কিন্তু ঠিক কী কারণে স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে এখন মানুষ? আমেরিকান দূতাবাসের সাবেক নিরাপত্তাকর্মী আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা। ২০০৪ সালে তিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। এর পর থেকে কর্মক্ষমতা হারান তিনি। এইচআইভি প্রতিরোধে নতুন এক রিং: নারীদের মধ্যেও পেয়েছে জনপ্রিয়তা আমাকে ৬ মাস ধরে প্রত্যেক দিন ধর্ষণ করা হতো এর পাঁচ বছরের মধ্যেই আরো একবার বড় ধরনের স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে সম্পূর্ণ চলনশক্তি হারিয়ে ফেলেন তিনি। মি: মোল্লার স্ত্রী নার্গিস আরা বলছিলেন, প্রথম স্ট্রোকটি করেছিলেন তিনি তার ৪০ বছর হওয়ার আগেই। "এখন শুধু ওনার শুধু নি:শ্বাসটা চলে বাকি কিছুই করতে পারেন না বলতেও পারেন না"। নার্গিস আক্তার বলছিলেন এমনিতে মি: মোল্লার অন্য কোন রোগ ছিলো না কিন্তু তারা ধারণা করেন পারিবারিক কিছু কারণে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন সেটাই স্ট্রোটের কারণ হতে পারে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হচ্ছে, একবার স্ট্রোকের পর যারা বেঁচে যাচ্ছে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি দ্বিগুণ। এছাড়া এক বছরের মধ্যে আরো একবার স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হতে পারে। কানাডার মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ২৬ হাজার মানুষের উপর গবেষণা করে পাওয়া গেছে, প্রথম স্ট্রোক করার পাঁচ বছরের মধ্যে একজন মানুষের এসব ঝুঁকির শঙ্কা বেশি। গবেষকরা বলছেন- স্ট্রোকের অন্যতম কারণ ডায়াবেটিকস, উচ্চ রক্তচাপ ধরা হলেও তার চেয়ে বড় আরো অনেক কারণ রয়েছে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স এন্ড হসপিটাল বলছে, বাংলাদেশে এখন প্রতি এক হাজারে তিন জন স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে। সেই হিসেবে প্রায় ৫ লক্ষ লোক স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে এর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবে ভুগছে। হাসপাতালটির একজন চিকিৎসক অধ্যাপক বদরুল আলম বলছিলেন মানসিক চাপ স্ট্রোকের একটি কারণ তবে তারচেয়ে বড় আরো অনেকগুলো কারণ রয়েছে। "ডায়াবেটিকস, উচ্চ রক্তচাপ অন্যতম কারণ স্ট্রোকের। মানসিক চাপ একটা বড় কারণ তবে এটাই একমাত্র কারণ না" -বলছিলেন তিনি। কানাডিয়ান ওই জার্নালে লেখক ড.মাইকেল হল লিখেছেন মৃত্যুঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও স্ট্রোককে একটি বড় সাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি। স্ট্রোক সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা রয়েছে বয়স্করা এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। কিন্তু সেটাকে একটা ভুল তথ্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশে তরুণ বয়সীদের মধ্যে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কতটা দেখা যাচ্ছে? ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স এন্ড হসপিটালের অধ্যাপক বদরুল আলম বলছিলেন, গত ১০/১২ বছরে ৪০ বছরের নিচে এখন অনেকে স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে। অধ্যাপক আলম বলছিলেন "৪০ বছরের নীচে এখন অনেকেই ডায়াবেটিকস বা রক্তচাপে ভুগছে। আমরা আগে ভাবতাম এগুলো একটু বয়স হলে হয়। কিন্তু আপনি দেখেন স্ট্রোকের এখন কোনো বয়স নেই। ২৫ থেকে ৩০ বছরের অনেকেই স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছে"। "আরেকটা বিভৎস কারণ যেটা দেখতে পাচ্ছি সেটা হলো টিনএজাররা মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে। মাদকে আসক্ত হয়ে অনেকে স্ট্রোক করছে, আমরা দেখেছি"। স্ট্রোকের কারণে তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশে কত মানুষ মারা যাচ্ছে তার কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে উত্তর আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরোপে মৃত্যুর তৃতীয় ও চতুর্থ কারণ স্ট্রোক আর উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রথম ও দ্বিতীয় প্রধান কারণ হিসেবে স্ট্রোককে উল্লেখ করা হয়েছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: চিকিৎসকেরা ���লছেন, বাংলাদেশে গত ১০/১২ বছরে ৪০ বছরের নিচে এখন অনেকে স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে। কানাডার মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, স্ট্রোক বা মিনি স্ট্রোকের কারণে যে ধরনের ঝুঁকির কথা আগে ধারণা করা হতো দীর্ঘস্থায়ী ঝুঁকি তার চেয়ে আরো ভয়াবহ। +text: ইসরায়েলি পার্লামেন্টে আরব এমপিরা কনেসেটের আরব এমপিরা এর ক্রুদ্ধ প্রতিবাদ জানিয়ে বিলের কপি ছিঁড়েছেন, কালো পতাকা উড়িয়েছেন। পিএলও-র মুখপাত্র হানান আশরাবি এর তীব্র নিন্দা করে বলেছেন, এই আইন ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে বর্ণবিভেদ, বৈষম্য, জাতিগত শুদ্ধি অভিযান এবং গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বকে লাইসেন্স দিয়েছে। ইসরায়েলের জনসংখ্যার ২০ শতাংশই হচ্ছে আরব সংখ্যালঘু। তারা মনে করছে, ইসরায়েল যে তাদেরকে দ্বিতীয় নাগরিকে পরিণত করছে - এটি তার আরেকটি প্রমাণ । ইসরায়েলের জনসংখ্যা ৯০ লাখ, এর মধ্যে ২০ শতাংশ হচ্ছে আরব - যাদের অনেকেই নিজেদের ফিলিস্তিনি বলে পরিচয় দেন। ইসরায়েল রাষ্ট্রের আইনে তারা সমান অধিকার ভোগ করেন, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই তাদের অভিযোগ যে তাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে দেখা হচ্ছে, এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আবাসনের ক্ষেত্রে তারা ইহুদি ইসরায়েলিদের চেয়ে কম সুবিধা পেয়ে থাকে। নাগরিক গ্রুপগুলো এই আইনের কঠোর নিন্দা করেছে। ইসরায়েলি পার্লামেন্টের আরব এমপি সহ কিছু সমালোচক একে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘুদের সময়কার বর্ণবৈষম্যমূলক শাসন বা অ্যাপার্থাইড-এর সাথে তুলনা করেছেন। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: জেরুসালেম ইস্যুতে মুসলিমদের সংহতি কতটা বাড়বে? জেরুজালেম রাজধানীর স্বীকৃতি পেলে বিপদ কোথায়? হারাম আল-শরিফ কেন এত স্পর্শকাতর একটি স্থান? অসলো শান্তি চুক্তি: কীভাবে সম্ভব হয়েছিল? জেরুসালেমে আল-আকসা সংলগ্ন ডোম অব দ্য রক ইসরায়েলি নেতারা এটা করলেন কেন? ইসরাযেলকে ইহুদি রাষ্ট্র ঘোষণা রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত। এর আগে কখনো আইনে পরিণত করা হয় নি। কিছু ইসরায়েলি রাজনীতিবিদ মনে করেন, ইহুদিদের রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠার যে আদি মূলনীতি - সেগুলো এখন হুমকির মুখে পড়েছে এবং ভবিষ্যতে এ ব্যাপারটা অপ্রাসঙ্গিক বা অচল হয়ে পড়তে পারে। অনেকে ইসরায়েলি আরবদের উচ্চ জন্মহার নিয়ে ভীত। অনেকে মনে করেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সমস্যার যদি শেষ পর্যন্ত 'দুই-রা��্ট্রভিত্তিক সমাধান' ছাড়া অন্য কোন রকম মডেলে সমাধান হয় - তখন ইসরায়েলের ইহুদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। একারণেই এরা দাবি করছিলেন, ইসরায়েল রাষ্ট্রের ইহুদি চরিত্র আইন করে সুরক্ষিত করা হোক। ইসরায়েল ফিলিস্তিন শান্তি প্রক্রিয়ার ওপর কি প্রভাব পড়বে? অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বিনিয়ামিন নেতানিয়াহু একাধিকার বলেছেন যে ফিলিস্তিনিদের সাথে শান্তি চুক্তি হতে হলে তাদেরকে ইসরায়েলকে একটি 'ইহুদি রাষ্ট্র' হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে, এবং ফিলিস্তিনিরা যে এ স্বীকৃতি দিচ্ছে না - এটাই শান্তির পথে সবচেয়ে বড় বাধা। । কিন্তু ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস জোর দিয়ে বলেছেন, তিনি কখনোই ইসরায়েলকে ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবেন না। তার যুক্তি ফিলিস্তিনিরা অনেক আগেই ইসরায়েল রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে, এর চেয়ে বেশি কিছু তাদের কাছ থেকে আশা করা উচিত নয়। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জেরুসালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী বলে স্বীকৃতি দিয়ে সেখানে মার্কিন দূতাবাস নিয়ে যাবার ঘোষণার তীব্র সমালোচনা হয়েছে। সমালোচকরা বলেছেন, এর মাধ্যমে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি প্রক্রিয়াকে গুরুতর সংকটে ফেলে দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে কোন আলোচনাই হচ্ছে না, এবং শান্ত্রি প্রক্রিয়া এখন কার্যত মৃত বলে অনেকে বলে থাকেন। এ অবস্থায় ইসরায়েল যথন নিজেকে ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে বসলো - তার কি প্রভাব শান্তি প্রক্রিয়ার ওপর পড়ে, তা দেখার বিষয়। জেরুসালেমে ওয়েস্টার্ন ওয়াল এলাকায় ইহুদিদের প্রার্থনা ইসরায়েলে-ফিলিস্তিন শান্তি-আলোচনার এক প্রধান বাধা জেরুসালেম শহরের মর্যাদা এবং ইহুদি বসতি স্থাপনের প্রশ্নগুলো। কিন্তু নতুন আইনে 'সম্পূর্ণ এবং একত্রিত' জেরুসালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এটা আন্তর্জাতিক আইনেরও বিরোধী - যাতে পূর্ব জেরুসালেমকে অধিকৃত এলাকা হিসেবে দেখা হয়। এ আইনের এক পূর্বতন খসড়ায় একটি ধারায় এমন সব বসতি তৈরির কথা ছিল - যাতে শুধু ইহুদিরাই থাকতে পারবে। এমন কিছু ইহুদি জনগোষ্ঠী আছে - যারা তাদের পাড়ায় ফিলিস্তিনিরা জমি কিনলে তাতে আপত্তি করে। 'নেশন স্টেট বিলের চুড়ান্ত খসড়ায় তাদের দাবি মানা না হলেও 'ইহুদি বসতি গড়ে তোলাকে উৎসাহিত করার' কথা বলা হয়। ফলে এটা স্পষ্ট যে আগামী দিনের শান্তি আলোচনায় এ বিষয়গুলো নতুন বিতর্ক তৈরি করবে। অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েল যে ধরণের শাসনব্যবস্থা চালু করেছে - তাকে সমালোচকরা প্রায়ই অ্যাপার্থেইড-এর সাথে তুলনা করেন। ইসরায়েল অবশ্য জোর দিয়ে তা অস্বীকার করে থাকে। ২০১১ সাল থেকেই এ আইনের খসড়া নিয়ে আলোচনা চলছে, এবং এতে বহু সংশোধনীও এসেছে। বৈষম্যমূলক বলে সমালোচিত অংশগুলো বাদ দেয়া হয়েছে বা এর ভাষাগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে আস্থার সংকট কি বাড়ছে? গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনার পর হোয়াটসএ্যাপে কড়াকড়ি 'কীভাবে আবিষ্কার করলাম যে আমার স্বামীর আরেকটি স্ত্রী আছে' ইসরায়েলকে 'প্রধানত: ইহুদি রাষ্ট্র' বলে চিত্রিত করে সেদেশের পার্লামেন্টে এক বিতর্কিত আইন পাসের পর সেখানকার আরব সংখ্যালঘুরা তীব্র সমালোচনা করেছেন। ওই আইনে হিব্রু ভাষাকেও ইসরায়েলের সরকারি ভাষা হিসেবে আরবীর ওপরে স্থান দেয়া হয়েছে। +text: সারাহার এখন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩০ কোটি কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারী আছেন মাত্র তিন জন। 'সারাহা' একটি আরবি শব্দ যার মানে হচ্ছে সততা। এর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে আপনার প্রোফাইলের লিংক আছে এমন যে কেউ আপনাকে মেসেজ পাঠাতে পারবে - কিন্তু আপনি জানতে পারবেন না যে এ বার্তাটি কে পাঠিয়েছে। জুলাই মাসে এ্যাপলের এ্যাপ স্টোরে তালিকার শীর্ষে ছিল এই সারাহা স্ন্যাপচ্যাট লোকের প্রোফাইল লিংক শেয়ার করার সুযোগ করে দেবার পর থেকেই এই সারাহা অ্যাপটি যাকে বলে 'ভাইরাল' হয়ে গেছে অর্থাৎ দ্রুত লোকের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে। জুলাই মাসে অ্যাপলের অ্যাপস্টোরে তালিকার শীর্ষে ছিল এই সারাহা। এর প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন ২৯ বছর বয়স্ক জয়নাল আবদিন তওফিক। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল - তার এই সারাহা যে এত জনপ্রিয়তা পাবে তা তিনি ভেবেছিলেন কিনা। আরো পড়তে পারেন: জয়নালআবদিন তওফিক মি. তওফিক বলছেন, তিনি আশাবাদী ছিলেন। ভেবেছিলেন, ১০০০ মেসেজ পেলেই তিনি খুশি হবেন - কিন্তু তা এখন ৩০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। যদিও এখানে কে মেসেজ পাঠাচ্ছে তার পরিচয় গোপন রাখার সুযোগ আছে, কিন্তু অনলাইনে হয়রানি, গালাগালি বা খারাপ আচরণ ঠেকানোর জন্যও তিনি কড়া প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন। ব্লক করার ব্যবস্থাও আছে এখানে। যদিও এই 'অনলাইন অ্যাবিউজ' সব প্ল্যাটফর্মের জন্যই সমস্যা - বলছেন তিনি। ""অপব্যবহার কিন্তু সকল সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোরই একটি সমস্যা। সারাহা মনে করে এরকম একটি ঘটনাও অন্যায়। আমরা এর বিরুদ্ধে বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছি। সেটি নিয়ে খোলাসা করে আমরা কিছু বলবো না কারণ তাতে অপব্যবহারকারীরা নানা বুদ্ধি পেয়ে যাবে। তবে ব্লক বা ফিল্টার করার মতো পদ্ধতিও আমাদের রয়েছে" -বলেন মি: তওফিক। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: সৌদি আরব থেকে 'সারাহা' এমন একটি মেসেজিং অ্যাপ বাজারে ছাড়া হয়েছে যা ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। ইতিমধ্যেই এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩০০ মিলিয়ন বা ৩০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। +text: ঘরে ফেরানোর দাবিতে কাশ্মীরি পন্ডিতদের সমাবেশ। দিল্লি, ২০১৯ ১৯৯০ সালের ১৯শে জানুয়ারির রাতে হাজার হাজার কাশ্মীরি পন্ডিত প্রায় এক বস্ত্রে ভ্যালি বা কাশ্মীর উপত্যকায় নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন। ধারণা করা হয় এর পর কয়েক লাখ পন্ডিত সেখান থেকে ভিটেছাড়া হয়ে চলে এসেছেন। গত তিন দশক ধরে ভারতেরই নানা প্রান্তে তারা একরকম শরণার্থীর জীবন যাপন করছেন। গত আগস্টে কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপ করার পর সরকার দাবি করেছিল এরপর সেখানে পন্ডিতদের ফিরে আসার পথ প্রশস্ত হবে, তবে বাস্তবতা কিন্তু অন্য রকমই বলছে। ২০১৯-র মে মাসে শ্রীনগরে ফিরে এসে আঠাশ বছর পর নিজের দোকান চালু করেন রোশনলাল মেওয়া "হাম আয়েঙ্গে আপনা ওয়াতন হাজীসাহাব অওর এহি পে দিল লাগায়েঙ্গে। এহি মরেঙ্গে অওর এহিকে পানি মে হামারি রাখ বহায় যায়েগি।" ভারতের নামী মঞ্চ অভিনেতা চন্দন সাধু, যিনি নিজে একজন কাশ্মীরি পন্ডিত, এই পংক্তিটি আবৃত্তি করে নিজের টুইটারে পোস্ট করেছিলেন দুদিন আগে। 'শিকারা' নামে একটি আসন্ন মুভির সংলাপ এটি, যাতে বলা হয়েছে 'হাজীসাহাব, আমি ঠিক একদিন ফিরব - ওখানেই মন বসাব, ওখানেই মরব, আর কাশ্মীরের নদীতেই আমার ছাই ভেসে যাবে।' এরপরই রাতারাতি এই লাইনগুলো যেন ভাইরাল হয়ে উঠেছে। পন্ডিত সমাজের নানা শ্রেণী-পেশার লোকজন ভ্যালি থেকে তাদের নির্বাসনের ৩০ বছর পূর্তিতে আবার ঘরে ফেরার শপথ নিচ্ছেন এই উচ্চারণেই। এদের মধ্যে আছেন এফএম রেডিও-র জনপ্রিয় মুখ খুশবু মাট্টু কিংবা সাংবাদিক আদিত্য রাজ কাউল, লেখক রাহুল পন্ডিতাও। শ্রীনগরের কাছে গান্ডেরবালে ক্ষীর ভবানী মন্দিরে হিন্দুদের উৎসব। জুন, ২০১৯ খুশবু মাট্টু পোস্ট করেছেন বিবিসিকে তিন বছর আগে দেওয়া তার সাক্ষাৎকারও, যেখানে তিনি বলেছিলেন কাশ্মীরে একদিন ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে তার সমাজের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথাও। কিন্তু ঠিক কী ঘটেছিল সেই ১৯৯০ সালের ১৯ জানুয়ারির রাতে, যাতে এক কাপড়ে উপত্যকা ছাড়তে হয়েছিল পন্ডিতদের? এখন জয়পুরে পন্ডিতদের ক্যাম্পে থাকেন নমিতা কাউল, তিনি বিবিসিকে বলছিলেন, "শীতের সেই রাতে আমরা ঘরে বসে টিভিতে সিনেমা দেখছিলাম।" "হঠাৎ চারদিক থেকে 'আল্লা হু আকবর' ধ্বনি উঠতে লাগল, 'পাকিস্তান জিন্দাবাদ' আর 'ভারতীয় কুকুররা ফিরে যাও' স্লোগানে আমরা কেঁপে উঠলাম।" কাশ্মীরি পন্ডিত সমাজের প্রতিনিধি, লেখক ও সাংবাদিক রাহুল পন্ডিতা "মসজিদ থেকে হাতিয়ার নিয়ে বেরিয়ে দলে দলে মানুষ আমাদের গলি-মহল্লা চারদিক থেকে ঘিরে ফেলল।" "বলা হল মেয়েরা থাকবে, কিন্তু পুরুষদের চলে যেতে হবে। দেওয়া হয়েছিল হত্যার হুমকিও।" "সেদিনের কথা ভাবলে আজও চোখ জলে ভিজে আসে, যে আমাদের জীবনে অমনটাও ঘটেছিল!" জম্মু ও কাশ্মীরের তদানীন্তন গভর্নর জগমোহনের উদ্যোগে সে রাতেই কাশ্মীর থেকে পন্ডিতদের সরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়ে যায়। এরপর বিগত তিন দশক ধরে তারা নিজ দেশেই পরবাসীর জীবন যাপন করছেন । প্রবীণ কাশ্মীরি রাজনীতিবিদ নাঈম আখতার অবশ্য এর মাঝে তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে অধুনালুপ্ত রাজ্য বিধানসভায় অনেকবার আলোচনাও হয়েছে। পিডিপির সিনিয়র নেতা নাঈম আখতারও মনে করেন, "পন্ডিতরা কাশ্মীরের অবিচ্ছেদ্য অংশ - তারা অন্য কারও চেয়ে এতটুকুও কম কাশ্মীরি নন।" "সবচেয়ে বড় কথা, তাদের জন্য আজ কাশ্মীরে ফেরা যত না-দরকার, তাদেরকে ফিরে পাওয়াটা কাশ্মীরেরও অনেক বেশি দরকার।" সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লাও একাধিকবার বলেছেন, ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে কাশ্মীরের উচিত হবে পন্ডিতদের উপত্যকায় ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা। কিন্তু সেখানকার রাজনীতিবিদদের যতই সহানুভূতি থাক, কাশ্মীরের নিরাপত্তা পরিবেশই এমন ছিল যে হিন্দু পন্ডিতরা সেখানে ফিরে গিয়ে কখনও আবার বসত করার ব্যাপারে নিরাপদ বোধ করেননি। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মাসছয়েক আগে কাশ্মীরের বিশেষ স্বীকৃতি বাতিল করার সময় পার্লামেন্টে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও দাবি করেছিলেন, "পন্ডিতরা এবং সুফিরাও কাশ্মীরিয়তের অংশ!" "তারা এতদিনে নিজের ঘরে ফিরতে প��রবেন", আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সংসদে দাঁড়িয়ে ঘোষণাও করেছিলেন তিনি। তবে গত ছ'মাসে ছজন পন্ডিতও কাশ্মীরে ফিরে গিয়ে বসত করতে পেরেছেন এমন কোনও রেকর্ড নেই, আর অদূর ভবিষ্যতে সে লক্ষণ দেখাও যাচ্ছে না। কিন্তু ৩০ বছর পরেও কাশ্মীরি পন্ডিতদের ঘরে ফেরার সঙ্কল্পে কিন্তু আজও চিড় ধরেনি। এখন ব্যাঙ্গালোরে থাকেন ভারতের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী আভা হাঞ্জুরা। তবু মনেপ্রাণে এখনও কাশ্মীরি পন্ডিত তিনি। আর তাই প্রতিটি কনসার্টে অক্লান্তভাবে গেয়ে চলেন, "রোশওয়ালো ইয়ারা দিলবরো, চলো চিনারো কে ঘরোঁ" - 'চলো বন্ধু, ফিরে যাই চিনার বনের গৃহে!' ভারত-শাসিত কাশ্মীর থেকে হিন্দু পন্ডিতদের নির্বাসনের তিরিশ বছর পূর্তিতে ওই সম্প্রদায়ের বহু মানুষ সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজেদের ভিডিও পোস্ট করে আওয়াজ তুলছেন 'হাম আয়েঙ্গে আপনা ওয়াতন' - যার অর্থ 'নিজেদের মুলুকে আমরা ঠিক ফিরব'। +text: মস্তিস্কে গুরুতর আঘাত পেলেই মানুষ এরকম দীর্ঘসময়ের জন্য সংজ্ঞাহীন অবস্থায় চলে যায় ২৭ বছর আগে মুনিরা আবদুল্লা যখন দুর্ঘটনার শিকার হন, তখন তার বয়স ছিল ৩২ বছর। তিনি মস্তিস্কে মারাত্মক আঘাত পেয়েছিলেন। গাড়িতে করে তিনি স্কুল থেকে তার বাচ্চাকে তুলতে যাচ্ছিলেন। পথে এক বাসের সঙ্গে তার গাড়ির সংঘর্ষ হয়। সেই একই গাড়িতে ছিলেন তার চার বছর বয়সী ছেলে ওমর ওবেয়ার। তবে মায়ের কোলে থাকায় তিনি রক্ষা পান। গুরুতর কোন আঘাত পাননি। সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি সংবাদপত্র দ্য ন্যাশনালকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ওমর জানিয়েছেন তার মার অবস্থার উন্নতি হয়েছে। "আমি কখনো তার ব্যাপারে আশা ছেড়ে দেইনি। কারণ আমার সবসময় মনে হতো একদিন তিনি জেগে উঠবেন।" "আমি এঘটনার কথা সবাইকে জানাচ্ছি যাতে করে কেউ তাদের প্রিয়জনের ব্যাপারে আশা ছেড়ে না দেন। এরকম অবস্থায় কেউ থাকলে তাকে মৃত বলে ধরে নেবেন না," বলছেন তিনি। মিজ মুনিরা আবদুল্লাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। পরে তাকে লণ্ডনে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তার অবস্থাকে ডাক্তাররা "ভেজিটেটিভ' বলে বর্ণনা করেন। এরপর তাকে আবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ফিরিয়ে নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতাল বা ক্লিনিকে রাখা হয়। একটি টিউবের মাধ্যমে খাবার খাইয়ে তাকে জীবিত রাখা হচ্ছিল। ঐ অবস্থাতেই তাকে ফিজিওথেরাপি দেয়া হচ্ছিল যাতে করে শরীরের মাংসপেশীগুলো ভালো থাকে। ২০১৭ সালে এক সরকারি অনুদানের ���র্থে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় জার্মানিতে। সাবেক ফর্মুলা ওয়ান চ্যাম্পিয়ন মাইকেল শুম্যাখার: স্কি দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর কোমায় আছে বহুদিন ধরে সেখানে তার ওপর কিছু অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর কিছু ঔষধও প্রয়োগ করা হয় যাতে করে কোমা থেকে তাকে জাগিয়ে তোলা যায়। একদিন তার ছেলে ওমরের সঙ্গে হাসপাতালে কারও তর্ক হচ্ছিল। তখন সেই শব্দে হঠাৎ তার মা জেগে উঠেন। ওমর জানান, "হাসপাতালের ঐ রুমে কিছু ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল। আমার মা বোধহয় বুঝতে পেরেছিলেন আমি বিপদে আছি। সেটি তাকে যেন একটি ধাক্কা দিয়েছিল।" "তিনি অদ্ভুত শব্দ করছিলেন। আমি ডাক্তারদের ডাকছিলাম তাকে পরীক্ষা করার জন্য। তারা বলছিলেন সব স্বাভাবিক আছে।" "এর তিনদিন পর আমি ঘুম থেকে জেগে উঠি কারও ডাকে, কেউ আমার নাম ধরে ডাকছিল।" "আমার মা আমাকে ডাকছিল, আমি আনন্দে যেন উড়ছিলাম। আমি এই মুহূর্তটার স্বপ্ন দেখেছি অনেক। এখন আমার নাম ধরেই তিনি প্রথম ডাকলেন।" মুনিরা আবদুল্লা এখন আরও অনেক বেশি সাড়া দিচ্ছেন। তাকে আবুধাবীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তাকে ফিজিওথেরাপি দেয়া হচ্ছে। জ্ঞান হারানোর বহু বছর পর এরকম চেতনা ফিরে পাওয়ার ঘটনা আরও ঘটেছে। তবে এরকম অবস্থায় থাকা কেউ কখন তার সংজ্ঞা ফিরে পাবেন, সেটা অনুমান করা কঠিন। টেরি ওয়ালিস নামে এক মার্কিন নাগরিক ১৯ বছর পর তার সংজ্ঞা ফিরে পেয়েছিলেন। এক গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়ার পর তিনি সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ছিলেন এই ১৯ বছর। সংযুক্ত আরব আমিরাতে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত এক নারী দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে কোমায় ছিলেন। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে তিনি কোমা থেকে জেগে উঠেছেন। +text: অনেকেরই ভুল ধারণা আছে যে প্লাস্টিকের বোতলে পানি খেলে ক্যান্সার হয় ইংল্যান্ডে চালানো এই গবেষণার ফল ইতোমধ্যেই 'ইউরোপিয়ান জার্নাল অফ ক্যান্সারে' প্রকাশিত হয়েছে। তবে, এই গবেষণায় অংশ নেয়া ইংল্যান্ডের মোট ১৩৩০ জন খুব সঠিকভাবেই ধূমপানকে ক্যান্সারের কারণ বলে সনাক্ত করেছেন। ধূমপান, স্থূলতা ও আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাবে যেসব ক্যান্সার হয় সেগুলো সবচে' বেশি প্রতিরোধযোগ্য বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের ক্যান্সার রিসার্চ প্রতিষ্ঠান জানাচ্ছে, প্রতি দশটি ক্যান্সারের ঘটনার ক্ষেত্রে অন্তত চারটি ঘটনা লাইফস্টাইল বা জীবন যাপনের পদ্ধতি দিয়ে প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে এজন্য ক্যান্সারের কারণ বিষয়ে সঠিক তথ্য জানাটা জরুরি। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনভিার্সিটি কলেজ লন্ডন ও ইউনিভার্সিটি অফ লিডস এর গবেষকরা, এই গবেষণার জন্য একটি জরিপ চালিয়েছিলেন। গবেষকরা বলছেন, জরিপে অংশ নেয়াদের মধ্যে অন্তত ৪০ ভাগ মানুষ ভুলভাবে 'স্ট্রেস' বা মানসিক চাপি এবং খাদ্যাভ্যাসকে ক্যান্সারের কারণ বলে মনে করে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের অন্তত তিন ভাগের এক ভাগ বিশ্বাস করে যে, ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফ্রিকোয়েন্সি (৩৫%) এবং জেনেটিকেলি মডিফায়েড (জিএম) খাবার (৩৪%) খেলে ক্যান্সার হবার আশঙ্কা রয়েছে। মাইক্রোওয়েভে খাবার গরম করলেও ক্যান্সার হয় বলে অনেকের ভুল ধারণা তাছাড়া, যথেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক তথ্য-প্রমাণ না থাকার পরেও, অন্তত ১৯ শতাংশ মনে করে যে মাইক্রোওয়েভ ওভেনে খাবার গরম করে খেলে এবং প্লাস্টিকের বোতল থেকে পানি খেলে ক্যান্সার হতে পারে। জরিপে যারা অংশ নিয়েছেন এর মধ্যে অবশ্য সবচে বেশি সংখ্যক মানুষ শতকরা ৮৮% ধূমপান এবং ৮০ ভাগ মানুষ পরোক্ষ ধূমপান আর ৬০ ভাগ মানুষ 'সানবার্ন' বা রোদে পোড়াকে ক্যান্সারের কারণ বলে উল্লেখ করেছেন। গবেষকরা বলছেন, ব্যাপারটা এমন নয় যে ক্যান্সারের কারণ সম্পর্কে যাদের মনে ভুল ধারণা ছিল তারা অনেক ঝুঁকিপূর্ণভাবে জীবন-যাপন করছিলেন। বরং গবেষকরা জানাচ্ছেন যে, ক্যান্সারের কারণ সম্পর্কে যারা অনেক সঠিক তথ্য জানে তারা বেশি সচেতন এবং তারা ধূমপান থেকে দূরে থাকে। অন্যান্য খবর: উত্তর কোরিয়া কেন পারমাণবিক পরীক্ষা বন্ধ রেখেছে? "সব পুলিশ এমন হলে বদলে যেত বাংলাদেশ" লাইকা ক্যামেরা, একজোড়া জুতো এবং একজন আব্বাস তাছাড়া সচেতন ব্যক্তিরা বেশি করে সবজি আর ফল-ফলাদিও খায় বলেও উল্লেখ করেছেন গবেষকেরা। ইউনিভার্সিটি অফ লিডস এর ড. স্যামুয়েল স্মিথ বলেন, "এটি খুবই দুশ্চিন্তার বিষয় যে, বৈজ্ঞানিক কোনো প্রমাণাদি না থাকার পরেও বহু মানুষ বিভিন্ন বিষয়কে ক্যান্সারের কারণ হিসেবে মনে করে।" মি. স্মিথ আরো বলেন যে, এই শতকের শুরুর দিকে অসত্য ও অপ্রমানিত বিষয়গুলোকে যে পরিমান মানুষ ক্যান্সারের কারণ হিসেবে মনে করতো, এখন তার থেকেও বেশি মানুষ সেটি মনে করছে। আর এর পেছনে ইন্টারনেটে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তথ্য জানাটা একটা বড় কারণ বলেই মনে করছেন ড. স্মিথ। তাই, ক্যান্সারের কারণ সম্পর্কে মানুষকে সঠিক তথ্য দিয়ে জীবনযাত্রাকে নিয়ন্ত্রনে সাহ��য্য করতে জনশিক্ষা আরো বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন তিনি। আর যুক্তরাজ্যের ক্যানসার রিসার্চ প্রতিষ্ঠানের ক্লেয়া হাইড বলেছেন, ক্যান্সের বিরুদ্ধে গ্যারান্টি দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু ক্যান্সারের সবচে' বড় কারণগুলো সর্ম্পকে ভুল-ভাল তথ্যের পেছনে সময়-খরচা না করে সঠিক তথ্য জানলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। প্লাস্টিকের বোতল থেকে পানি খেলে কি ক্যান্সার হয়? কিংবা মাইক্রো ওয়েভ ওভেনে খাবার গরম করলে? নতুন এক গবেষণায় বলা হচ্ছে ক্যান্সার সম্পর্কে এরকম অনেক ভুল বা অসত্য তথ্য মানুষ বিশ্বাস করে বসে আছে অনেক মানুষ। +text: সুলতান মোহাম্মদ মনসুর সপ্তাহখানেক আগে গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ এবং আরেকজন নেতা মোকাব্বির খান স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরিকে জানিয়েছিলেন যে আজ অর্থাৎ ৭ই মার্চ তারা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে চান। আজ বেলা ১১টার কিছু পরে মি. আহমেদ সংসদ ভবনে স্পিকারের কাছে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন। যদিও মোকাব্বির খান শপথ নেননি। তাঁর এই সিদ্ধান্ত গণফোরামের সাথে বিএনপির সম্পর্ক কতটা টানাপোড়েনের সৃষ্টি করবে? বিএনপির একজন নেত্রী রুমিন ফারহানা বলছিলেন, যিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এর সাথে গণফোরাম বা ঐক্যফ্রন্টের সাথে বিএনপির সম্পর্কের উপর কোন প্রভাব পড়ার অবকাশ নেই। "ভরসা না করার মতো অবস্থা তো তৈরি হয়নি। গণফোরামতো এই দুজনের শপথ নেয়ার সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানায়নি।" মিজ: ফারহানা বলেন, "গণফোরামের প্রধান নেতা, সাধারণ সম্পাদক প্রত্যেকে একই ভাষায় শক্তভাবে বলছেন।...সুতরাং এখানে গণফোরাম বা ঐক্যফ্রন্টের ভাঙ্গন বা ফাটল বা ভুল বুঝাবুঝির কোন অবকাশ নেই।" আরো পড়ুন: আওয়ামী লীগ থেকে ড. কামাল যেভাবে বেরিয়ে আসেন ধানের শীষে জিতলেও কেন শপথ নেবেন সুলতান মনসুর শপথ নিলেও কি সুলতান মনসুর এমপি থাকতে পারবেন? ঐক্যফ্রন্ট নেতারা (ফাইল ফটো) জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণফোরাম, বিএনপিসহ ২০ দলীয় ঐক্যজোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নেয়। সেই নির্বাচনে গণফোরাম এবং বিএনপি মোট সাতটি আসন পায়। ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করে জিতলেও, সেই প্রতীকের ধারক বিএনপি এবং নিজের দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে গণফোরাম নেতা সুলতান মোহম্মদ মনসুর আহমেদের আজ এমপি হিসাবে শপথ নেয়াতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা, মেজর (অব) হাফিজুদ্দিন আহমেদ কট্টর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। "এতে করে ঐক্যফ্রন্টের সাথে বিএনপির টানাপোড়েনের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে," বলেন তিনি। মি: আহমেদ বলেছেন, "নিশ্চয়ই প্রভাব পড়বে। একটা দলের প্রতীক ব্যবহার করে নির্বাচনের পর সেই দলকে অস্বীকার করা একেবারেই অনৈতিক।" "এর ফলে বিএনপির সাথে ঐক্যফ্রন্টের টানাপোড়েন দেখা দিচ্ছে। আমরা আশা করি যে গণফোরাম সুলতান মনসুরের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে।" এদিকে শপথ নেয়ার আগে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বিবিসিকে বলেছিলেন, তার সংসদীয় এলাকার জনগণ চান তিনি শপথ নেন। "সংসদে যাওয়ার জন্যই তো এমপি ইলেকশনে" প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। তার এই সিদ্ধান্তকে গণফোরাম কঠোরভাবে নাকচ করে দিয়েছিল এবং দলীয় নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছিল। মোকাব্বির খান আজ শপথ নেবার কথা থাকলেও গতকাল নিশ্চিত করেন তিনি শপথ নেবেন না। বিএনপির আরেকজন নেত্রী শামা ওবায়েদ মনে করেন, তারা একটা বৃহত্তর স্বার্থে এক হয়েছিলেন, সেখানে কেউ যদি তাদের সাথে না থাকেন তাহলেও তারা তাদের মূল আদর্শ থেকে সরে যাবেন না। "রাজনীতিতে এমন হতে পারে। অনেকে আসবে, অনেকে যাবে। সেটার জন্য আমাদের মূল লক্ষ্য, মূল আদর্শ থেকে বিচ্যুত হবো না।" "সেটাইতো রাজনীতি। দেশের জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য যে সংগ্রাম সেখানে যদি আমাদের সাথে কেউ থাকে, তাহলে ভালো আর না থাকলে আমরা সেই সংগ্রাম চালিয়ে যাবো," বলেছেন মিজ: ওবায়েদ। এদিকে নানা জল্পনা -কল্পনার পর গতকাল গণফোরামের আরেক নেতা যিনি উদীয়মান সূর্য নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন সেই মোকাব্বির খান নিশ্চিত করেন তিনি শপথ নেবেন না। এদিকে মি. আহমেদ শপথ নেয়ার বিষয়ে অটল থাকেন। তবে তার বিষয়ে দলীয় ভাবে কি সিদ্ধান্ত আসে সেটাই এখন দেখার বিষয়। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: দুই এমপিকে নিয়ে কঠিন সংকটে গণফোরাম গণফোরামের দুই প্রার্থীর সংসদে যাওয়া কী প্রভাব পড়বে ঐক্যফ্রন্টে ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করে জিতলেও, সেই প্রতীকের দল বিএনপি এবং নিজের দলের সিদ্ধান্ত, অনুরোধ, হুমকি উপেক্ষা করে গণফোরাম নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আজ এমপি হিসেবে শপথ নিয়েছেন। +text: ডোনাল্ড ট্রাম্প এসময় রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট দাঙ্গাকারীদের এই হামলাকে 'বর্বরোচিত হামলা' বলে মন্তব্য করেছেন। মার্কিন কংগ্রেসে ব্যাপক ভাংচুর এবং বিশ্বনেতাদের ���িন্দার একদিন পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন অঙ্গীকার করলেন। তিনি এমন এক সময়ে এই কথা বলছেন যখন শীর্ষ ডেমোক্রেটিক নেতারা তাকে প্রেসিডেন্ট অফিস থেকে সরে যেতে বলেছেন। যদিও ১৩ দিন পর তার এমনিতেই পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা রয়েছে। এই বক্তব্যের মাধ্যমে গত বছরের নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজের পরাজয় এই প্রথম প্রকাশ্যে স্বীকার করলেন বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে কোন ধরনের প্রমাণ ছাড়াই নির্বাচনের কারচুপির অভিযোগ করে ফলাফল প্রত্যাখান করেছিলেন মি. ট্রাম্প। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটার ১২ ঘণ্টা তার অ্যাকাউন্ট ব্লক করে রাখে কারণ টুইটার মনে করে ট্রাম্পের টুইট সহিংসতাকে আরো বাড়িয়ে দিতে পারে। আর নতুন এক ভিডিও বার্তায় মি. ট্রাম্প বলেছেন, "এখন কংগ্রেস ঐ ফলাফল অনুমোদন করেছে। ২০শে জানুয়ারি একটা নতুন প্রশাসনের উদ্বোধন হবে।" "এখন আমার লক্ষ্য হবে সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও নির্বিঘ্নভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। এই মুহূর্তে দরকার হল নিরাময় ও মিটমাট করে ফেলা।" এদিকে তিনি তার "দুর্দান্ত সমর্থকদের"ও প্রশংসা করে বলেছেন, "আমাদের অসাধারণ যাত্রা মাত্র শুরু হল।" অথচ ভোটে কারচুপির যে অসমর্থিত অভিযোগ তিনি এর আগে এনেছিলেন এবং যার প্রেক্ষিতে বুধবার তার কট্টর সমর্থকরা ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালিয়েছিল সেই অভিযোগ সম্পর্কে নতুন এই ক্লিপে তিনি তেমন কিছু বলেননি। আরো পড়ুন: ক্যাপিটল ভবনের বাইরে জড়ো হয় ট্রাম্পের হাজার হাজার সমর্থক। ওই দিনের নজিরবিহীন হামলার ফলে প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট জো বাইডেনের জয়কে অনুমোদন দেওয়ার জন্য শুরু হওয়া কংগ্রেস অধিবেশন কয়েক ঘণ্টার জন্য স্থগিত রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন ভাইস-প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এবং অন্যান্য আইন-প্রণেতারা। সহিংসতার পর হোয়াইট হাউসের বেশ কিছু কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। সবশেষ খবরে বলা হয়, ডেপুটি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মিক মালভেনি পদত্যাগ করেছেন। তিনি ছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের একজন। এর আগে পদত্যাগ করেন ডেপুটি প্রেস সচিব সারা ম্যাথুজ, ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের চিফ অব স্টাফ স্টেফানি গ্রিশাম, হোয়াইট হাউসের সোশ্যাল সেক্রেটারি রিকি নিচেটা, ও ডেপুটি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ম্যাট পটিঙ্গার। মার্কিন সেনেটে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা চাক শুমার ��ক্রমণের পর সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী প্রয়োগ করে অবিলম্বে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অপসারণের আহ্বান জানিয়েছেন। একই আহ্বান জানিয়েছেন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। কংগ্রেস ভবনের ভেতরে বেশ কয়েকজন নেতৃস্থানীয় কিউএ্যানন গ্রুপের কর্মীকে দেখা গেছে। মেয়াদের বাকি দিনগুলো ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে নিষিদ্ধ ট্রাম্প টুইটার তার অ্যাকাউন্ট খুলে দিলেও ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ ঘোষণা করেছেন যেডোনাল্ড ট্রাম্প আর যে কয়েকটি দিন প্রেসিডেন্ট আছেন - সেই পুরো সময়টার জন্য তার ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম এ্যাকাউন্ট সাসপেণ্ড করেরাখা হবে। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন,"আমরা মনে করছি প্রেসিডেন্টকে এ সময়টায় আমাদের সেবা ব্যবহার করতে দেয়াটা খুব বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হবে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: কী ঘটেছিল? আমেরিকার আইন-প্রণেতারা যখন নভেম্বরের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জো বাইডেনের জয় আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করার জন্য অধিবেশনে বসেছিলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শত শত সমর্থক তখন আমেরিকার আইনসভা কংগ্রেসের ভবন ক্যাপিটল-এ ঢুকে পড়ে। কয়েক ঘণ্টা ভবন কার্যত দখল করে রাখার পর বিক্ষোভকারীরা ধীরে ধীরে ক্যাপিটল প্রাঙ্গণ ছেড়ে বাইরে চলে যেতে থাকে। রাজধানী ওয়াশিংটনে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১২ ঘণ্টার কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে, কিন্তু সান্ধ্য আইন শুরু হবার পরও শত শত বিক্ষোভকারীকে রাজপথে জটলা পাকাতে দেখা গেছে। দুপুরের পরই আমেরিকার রাজধানীতে নাটকীয় দৃশ্যে দেখা যায় - শত শত বিক্ষোভকারী ভবনটিতে ঢুকে পড়ছে আর পুলিশ কংগ্রেস সদস্যদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিচ্ছে। কয়েক ঘণ্টা ভবন কার্যত দখল করে রাখার পর বিক্ষোভকারীরা ধীরে ধীরে ক্যাপিটল প্রাঙ্গণ ছেড়ে বাইরে চলে যেতে থাকে। ওই দিনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। আমেরিকার কংগ্রেস ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের নজিরবিহীন হামলা ১২ ঘণ্টা পর টুইটার অ্যাকাউন্ট ফিরে পাওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একদিকে যেমন তার সমর্থকদের প্রশংসা করেছেন, আবার ২০শে জানুয়ারি সুশৃঙ্খলভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। +text: করোনাভাইরাসে গত তিনদিন ধরে প্রতিদিনই ৪০ জনের ওপর মৃত্যু হচ্ছে। মৃতদের বেশিরভাগই ঢাকা শহর ও বিভাগের বাসিন্দা। এই ভাইরাসে গত তিনদিন ধরে প্রতিদিনই ৪০ জনের ওপর মৃত্যু হচ্ছে। মৃতদের বেশিরভাগই ঢাকা শহর ও বিভাগের বাসিন্দা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩,১৯০ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭৪ ৮৬৫ জন। বাংলাদেশ জুন মাসের শুরু থেকেই প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হচ্ছে। মঙ্গলবার শনাক্ত হয়েছিল ৩,১৭১ জন। শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ। অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, ১৫,৯৬৫টি নমুনা পরীক্ষা করে এই রোগীদের শনাক্ত করা হয়। এই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ৫৬৩ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট সুস্থ হয়েছেন ১৫, ৮৯৯ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১ দশমিক ২৪ শতাংশ। জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি এন্ড মেডিসিনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের ১৮৮টি দেশ বা অঞ্চলের ৭২ লক্ষ ৪১ হাজার ৭৯জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত বিশ্বে মৃত্যু হয়েছে ৪ লক্ষ ১১ হাজার ২৯২ জনের। কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? বিশ্ব মহামারি শেষ হতে কতদিন লাগবে? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় করোনাভাইরাস নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন যারা মারা গেছেন অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে পুরুষ ৩৩ জন এবং নারী চার জন। বয়সের হিসাবে: ১১ থেকে ২০ বছর: ১ জন ৩১ থেকে ৪০ বছর: ৩ জন ৪১ থেকে ৫০ বছর: ৫ জন ৫১ থেকে ৬০ বছর: ১০ জন ৬১ থেকে ৭০ বছর: ১০ জন ৭১ থেকে ৮০ বছর: ৭ জন ৮১ থেকে ৯০ বছর: ১ জন তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা ২৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ১ জন, সিলেট বিভাগে ১ জন, বরিশাল বিভাগে ২ জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১জন মৃত্যুবরণ করেছেন। হাসপাতালে মারা গেছেন ২৫ জন এবং বাসায় মারা গেছেন ১২ জন। অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, ''সচেতনতা, সাবধানতা, সতর্কতা আমাদের সুরক্ষিত রাখতে পারে। আপনার সুরক্ষা আপনার হাতে। কাজেই সুরক্ষার জন্য যেসব স্বাস্থ্যবিধির কথা বলা হয়, সেগুলো মেনে চলুন। নিজে সুরক্ষিত থাকুন, পরিবারে�� সকল সদস্যকে সুরক্ষিত রাখুন। সবসবময় মাস্ক ব্যবহার করুন, বারবার সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন।'' বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো ১০১২ জনের। +text: ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট হতে পারে দুই রকমের। এক অনুসন্ধান কার্যক্রমের পর এই উদ্বেগের চিত্র উঠে আসে সিলিকন ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট বিষয়ে যেটি সেখানে সবচেয়ে সাধারণ ধরনের ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট পদ্ধতি। সাধারণত দুই ধরনের স্তন ইমপ্ল্যান্ট করা হয়ে থাকে- স্মুথ ইমপ্ল্যান্ট এবং টেক্সচার্ড ইমপ্ল্যান্ট । ফ্রান্সে নারীদেরও এখন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে "টেক্সচার্ড" সিলিকন ইমপ্ল্যান্ট ব্যবহার না করতে। কারণ কর্তৃপক্ষ অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখেছে- এর সাথে বিরল এক ধরনের ক্যান্সার হওয়ার যোগসূত্র রয়েছে। ব্রিটিশ নারীরা এখনো এই ধরনের ইমপ্ল্যান্ট করে স্তনকে নিটোল বা আকর্ষণীয় করে তুলছেন। এবং দেশটিতে এটি বন্ধের জন্য যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষের কোনও সতর্কতামূলক নির্দেশনা নাই। ওষুধ এবং স্বাস্থ্য সেবা সংক্রান্ত পণ্য নিয়ন্ত্রণকর্তৃপক্ষ (এমএইচআরএ) -এর মুখপাত্র বলেন, আমরা জানি সিলিকন ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট নিয়ে একধরনের উদ্বেগ রয়েছে-আমরা এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক নজর রাখছি। এই পণ্যের উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ইমপ্ল্যান্ট ব্যবহারের নিরাপত্তা বিষয়ে ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং গবেষণার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়, এবং আমেরিকা ও ইউরোপে এক দশকের বেশি সময় ধরে তা ব্যবহৃত হচ্ছে। বিবিসির প্যানোরমা অনুষ্ঠান ইমপ্ল্যান্ট নিয়ে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালাচ্ছে, সাথে আছে ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম এবং দি গার্ডিয়ান পত্রিকা, ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা। হীনমন্যতা জ্যানেট ট্রিলাওনির স্তন ক্যান্সার গত ২০ বছর ধরে। তার স্তন কেটে ফেলা দেয়া হয়েছিল । এরপর টেক্সচার্ড। ইমপ্ল্যান্ট দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল তার স্তন। এখন তার ডায়াগনোসিস চলছে। জ্যানেটকে আরও স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তার ব্রেস্ট ক্যান্সার নয় কিন্তু ইমিউন সিস্টেমে একধরনের ক্যান্সার শনাক্ত হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি স্কার টিস্যুতে এবং ইমপ্ল্যান্টের কাছে তরলের মধ্যে পাওয়া যায়। অনেক ক্ষেত্রে তা পুরো শরীরে ছড়িয়ে যেতে পারে। এই নারী বলেন: "এটা ভাবা আতঙ্কজনক ছিল যে আমি নিশ্চয়ই কিছু করেছি, যার কারণে এর আগে আমার ক্যান্সার হয়েছিল এরপর আবার নতুন করে ক্যান্সারে দেখা দিল। "আমি পুরোপুরি হতাশ হয়ে গিয়েছিলাম। আমি আতঙ্কিত হয়ে গিয়েছিলাম এবং কোনও ধারনাই ছিলনা যে এমনটা ঘটতে পারে।" জ্যানেট এখন আরও বায়োপসি রিপোর্টের অপেক্ষা করছেন এবং তাকে বলা হয়েছে যে তার ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য তাকে কেমোথেরাপি দেয়ার প্রয়োজন হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ফ্রান্সে ২০১১ সাল থেকে ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট বিষয়ে পরীক্ষা চলছে, যখন তারা বিআইএ- এএলসিএল-এর রিপোর্ট পেতে শুরু করে। ইমপ্ল্যান্টের পর ঝুঁকি সারা বিশ্বেই রয়েছে তবে তা ছোট-খাটো বলে মনে করা হয়। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে এমএইচআরএ স্তন ইমপ্ল্যান্ট করা নারীদের সম্পর্কে ৫৭টি রিপোর্ট পায় এএলসিএল-এর, তার মধ্যে ৪৫ জনকে নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। ধারনা করা হয় যে, বিআইএ-এএলসিএল এর ঝুঁকি আনুমানিক ২৪,০০০ইমপ্ল্যান্টের ঘটনার মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে হয়। ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন অব প্লাস্টিক এবং রি-কনস্ট্রাকটিভ অ্যাসথেটিকস সার্জনস বা সংক্ষেপে বিএএপিএস-এর মতে, ব্রিটেনে শতকরা ৯৯ ভাগ ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট এর ক্ষেত্রে টেক্সচার্ড ইমপ্ল্যান্ট পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটির ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট বিষয়ক একজন বিশেষজ্ঞ ডক্টর সুজানে টার্নার বলেন, এটা একটা উদ্বেগরে বিষয় অবশ্যই বিশেষ করে এখন আমরা যেটা দেখছি এইসব নারীদের মধ্যে এটা দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন "ঝুঁকি কম কিন্তু তারপরও এটা একটা ঝুঁকি যার সম্পর্কে অমাদের জানা উচিত এবং জানানো উচিত"। অনুসন্ধানে জানা গেছে অনেক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান টেক্সচার্ড ইমপ্ল্যান্ট পণ্য প্রকাশ্যে বিক্রির আগে যথাযথ নিয়ম অনুসারে পর্যাপ্ত পরীক্ষা করে না। এইসব পরীক্ষার মাধ্যমে শরীরে এর কি ধরনের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া হয় তা নির্ণয় করা হয়। উৎপাদনকারীরা দাবি করে থাকে এই ধরনের পরীক্ষা অপ্রয়োজনীয় কিন্তু ফরাসি রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষ বলছে, "মানবশরীরের এর ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া কি সে বিষয়ে পরীক্ষা না নেয়ার বিষয়ক উৎপাদনকারীদের দেয়া প্রায় সব যুক্তি তর্ক অগ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে"। অনেক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এখন বলছে যে তারা প্রয়োজণীনীয় পরীক্ষা করেছে। কিন্তু গোপনীয়তার নীতি অনুসারে আমাদের কি করা হয়েছে তা দেখার অনুমতি দেয়া হয় না। তদন্তে দেখা গেছে যে, ইউরোপ আমেরিকার উৎপাদনকারীরা ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট সংক্রান্ত সমস্যার সম্পর্কে রিপোর্টে সঠিক তথ্য দেয়নি। সুতরাং ঝুঁকির মাত্রা সম্পর্কে সঠিক ধারণা কারও নেই কারণ স্তন প্রতিস্থাপনের ঘটনা পর্যাপ্ত-ভাবে অনুসরণ করা যায় না । ফলে সমস্যাগুলো হয়তো কয়েক বছর পরে মারাত্মক রূপ নিতে পারে। ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণের জন্য ২০১৬ সালে নিবন্ধনের উদ্যোগ নেয়া হয় কিন্তু সেখানে এখনো স্বতপ্রণোদিত হয়ে অল্পসংখ্যক নিবন্ধন করছেন।" অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কার্ল হেনেঘান বলেন, এই বিষয়ে ক্যাম্পেইনাররা গত ২৫ বছর ধরে নিবন্ধনের জন্য দাবি তুলে আসছে। "প্রতি ইমপ্ল্যান্ট নিবন্ধনের আওতায় আসা উচিত কারণ এটি রোগীর স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তাকে সংজ্ঞায়িত করে। আর তা না থাকলে আমরা অন্ধকারেই থেকে যাবো।" ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট অর্থাৎ স্তনের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য সিলিকন ব্যবহার করে তাকে সুগঠিত ও আকর্ষণীয় করার যে পদ্ধতি তার স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্রিটেনের একদল গবেষক। +text: ব্রেন্টন টারান্টের বিরুদ্ধে এখন একটি হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ২৮ বছর বয়সী ব্রেন্টন টারান্টকে একটি হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং ধারণা করা হচ্ছে, এরপর তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ তোলা হবে। ব্রেন্টনকে পারেমোরেমোর অকল্যান্ড জেলখানা, যাকে নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে কঠোর জেলখানাগুলোর একটি ভাবা হয়, সেখানে সবার থেকে আলাদা রাখা হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের সংবাদ বিষয়ক ওয়েবসাইট স্টাফ এক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ব্রেন্টন জানিয়েছে যে তাকে কোন দর্শনার্থীর সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না, কোন ফোনও করতে দেয়া হচ্ছে না। আরো পড়তে পারেন: ঢাকার অবৈধ ভবনগুলো টিকে আছে কীভাবে এক নারীর দুই জরায়ু থেকে জন্মালো তিন সন্তান আগুন থেকে পালানোর সিঁড়ি ছিল তালাবন্ধ হামলায় ক্রাইস্টচার্চের আল-নুর মসজিদেই বেশি মানুষ মারা গেছেন ১৫ই মার্চ ক্রাইস্টচার্চে সেই হামলার ধাক্কা এখনো সামলে উঠতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। ঘটন���র পরের শুক্রবারে হ্যাগলি পার্কে এক স্মরণসভায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন এবং অন্তত কুড়ি হাজার মানুষ নিহতদের স্মরণে সমবেত হয়েছিলেন। ব্রেন্টনের অভিযোগ আসলে কী? হামলার পরদিন ১৬ই মার্চ ব্রেন্টনকে ক্রাইস্টচার্চে আদালতে হাজির করা হয়। এরপরই তাকে অকল্যান্ডের ঐ জেলে পাঠিয়ে দেয়া হয়। স্টাফ ওয়েবসাইট জানিয়েছে, ব্রেন্টন ডিপার্টমেন্ট অব কারেকশনে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছে, জেলখানায় সে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, বিশেষ করে ফোন এবং কোন পরিজনের সঙ্গে দেখা করতে পারছে না সে। হামলার পর নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা সবার প্রশংসা কুড়িয়েছে নিউজিল্যান্ডের আইন অনুযায়ী একজন বন্দি সপ্তাহে একজন বেসরকারি দর্শনার্থীর সঙ্গে অন্তত ৩০ মিনিট কথা বলতে পারবেন এবং সপ্তাহে একবার ফোনে কারো সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। এছাড়া একজন বন্দি যথার্থ খাবার ও পানীয়, বিছানাপত্র, স্বাস্থ্যসেবা ও ব্যয়ামের সুবিধাদি পাবেন। ডিপার্টমেন্ট অব কারেকশনের একজন কর্মকর্তা স্টাফকে জানিয়েছেন, সবার থেকে আলাদা করে তাকে রাখা হয়েছে এবং তাকে সারাক্ষণ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ফলে সে অনেক ন্যুনতম সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে সে অভিযোগ করেছে। অভিযোগ কতটা যথার্থ? নিউজিল্যান্ডের ডিপার্টমেন্ট অব কারেকশনের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বন্দিদের মানবতা, মর্যাদা এবং সম্মানের সঙ্গে থাকার অধিকার রয়েছে। তবে, কর্তৃপক্ষ বিশেষ পরিস্থিতিতে কোন বন্দির জন্য এ নিয়মের অন্যথা করতে পারে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোন বন্দিকে যদি নিরাপত্তার হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে আলাদা করে রাখা হয়, তাহলে তার ক্ষেত্রে অন্য যে কোন নিয়ম শিথিল হতে পারে। জেলে কী অবস্থায় আছে ব্রেন্টন? ডিপার্টমেন্ট অব কারেকশনের একজন মুখপাত্র নিউজিল্যান্ডের গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, যে ব্রেন্টন কোন গণমাধ্যম বা দর্শনার্থীর সঙ্গে দেখা করতে পারে না। হ্যাগলি পার্কে স্মরণসভায় কুড়ি হাজারের বেশি মানুষ অংশ নেয় দেশটির প্রচলিত আইন অনুযায়ী নিরাপত্তার কারণে তার সম্পর্কে কোন তথ্য বাইরে প্রকাশ করা যাবে না। এদিকে, স্টাফ ওয়েবসাইট জানিয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে ব্রেন্টনের থাকার জায়গা থেকে এক কংক্রিট আঙিনায় যাওয়া যায়, যেখানে সে দিনে একবার একঘণ্টার জন্য যেতে পারে। তবে সে সবকিছু নিয়ে অভিযোগ করতে থাকে। এ��্রিলের পাঁচ তারিখ পর্যন্ত ব্রেন্টনকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। ক্রাইস্টচার্চে পরবর্তী শুনানির দিনে তাকে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে আদালতের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। নিউজিল্যান্ডের ক্ষত সারছে যেভাবে ঐ হামলার ধাক্কা সামলাতে নিউজিল্যান্ড যে অভূতপূর্ব প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, তাকে সম্মান জানিয়েছে সারা বিশ্ব। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডান বলেছেন, আমরা হেইট বা ঘৃণা এবং ভীতির ঊর্ধ্বে নই। কিন্তু জাতি হিসেবে আমরা দ্রুত সেরে উঠবো। ঐ ঘটনায় ৫০ জন মানুষ মারা গেছেন। এখনো ২২জন মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, এর মধ্যে চার বছর বয়সী একটি শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে হামলা চালিয়ে ৫০জন মানুষকে হত্যা করার দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি এবার আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন যে কারাগারে তিনি চিকিৎসা পাচ্ছেন না। +text: করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। মৃতদের মধ্যে ৩৯জন পুরুষ এবং ২৭জন নারী। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ৯৩৮৪ জন। গত আটই মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর গত চব্বিশ ঘন্টাতেই ছিল একদিনে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ও শনাক্তের দিন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৪৩১১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭২১৩ জন শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ছিল ২১.০২ শতাংশ। আরো পড়ুন: কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন এনিয়ে টানা তৃতীয় দিনের মতো সংক্রমণ সাত হাজারের বেশি হলো। রবিবার প্রথমবারের মত দৈনিক শনাক্ত সাত হাজার অতিক্রম করেছিল। গত বছরের মার্চের ৮ তারিখে বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপরের দুই মাস দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা তিন অংকের মধ্যে থাকলেও সেটা বাড়তে বাড়তে জুলাই মাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। এরপর বেশ কিছুদিন দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা কমতে কমতে এক পর্যায়ে তিনশোর ঘরে নেমে এসেছিল। তবে এবছর মার্চের শুরু থেকেই শনাক্তে ঊর্ধ্বগতি শুরু হয়। এমনকি মৃত্যুর সংখ্যাও বেশ কিছুদিন দশের নিচে ছিল। কিন্তু তাতেও দেখা দেয় ঊর্ধ্বগতি। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশে লকডাউন জারি করেছে সরকার। চিকিৎসক এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, হাসপাতালগুলোর ওপর যে হারে চাপ বাড়ছে, তাতে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা সেবা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। বাংলাদেশ করোনাভাইরাস সংক্রমণে একদিনে মৃত্যুর সংখ্যা রেকর্ড ছড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৬৬জন। একই সাথে শনাক্তের হারেও হয়েছে নতুন রেকর্ড। +text: অস্ট্রেলিয়ায় হাজার হাজার উট মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার প্রত্যন্ত এলাকায় থাকা ওই উটগুলোকে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে মেরে ফেলা হবে। এই কার্যক্রম বুধবার থেকেই শুরু হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী বিষয়ক কর্মকর্তারা বলছেন, এই পশুগুলো বেশি পরিমাণ পানি পান করছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকছে না। সম্প্রতি এই পশুগুলো পানির খোঁজে লোক বসতির কাছাকাছি চলে আসছে বলেও জানান তারা। তীব্র খরায় কিছু কিছু শহর পানিশূন্য হয়ে পড়ায় এই সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। একই কারণে ভয়াবহ দাবানলেরও মুখে পড়েছে দেশটি যা এর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে মারাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হয়- দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আনাঙ্গু পিৎজানজাতজারা ইয়ানকুনিৎজাতজারা বা সংক্ষেপে এপিওয়াই এলাকায়- আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রায় ২৩০০ মানুষ বসবাস করে। "এই উটগুলো পানির খোঁজ করতে থাকায় তা প্রত্যন্ত এপিওয়াই এলাকায় আদিবাসী সম্প্রদায় এবং তাদের পশুপালনের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে," এপিওয়াই এলাকার ভূমি সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটি এক বিবৃতিতে একথা জানায়। আরো পড়ুন: গ্রেপ্তার হল ভালুকের 'লিঙ্গভুক চোরা শিকারি' অস্ট্রেলিয়ায় দাবানল: উপকূলের বাড়িঘর পুড়ে ছাই অস্ট্রেলিয়ায় স্বস্তির বৃষ্টি, কিন্তু আগুন নেভবার আশ্বাস নেই উটের মৃতদেহ গুরুত্বপূর্ণ পানির উৎসকে দূষিত করে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার পরিবেশ বিভাগ যা এই হত্যাকে সমর্থন দিচ্ছে তারা বলছে যে, খরার কারণে "প্রাণী কল্যাণের ইস্যুটি ভয়াবহ" রূপ নিয়েছে। তৃষ্ণায় অনেক উট মারা গেছে এবং পানির খোঁজ করতে গিয়ে পদদলিত হয়েও মারা গেছে আরো বেশ কিছু উট। "অনেক ক্ষেত্রে এসব পশুর মৃতদেহ গুরুত্বপূর্ণ পানির উৎসকে দূষিত করেছে," এক মুখপাত্র বলেন। ১৮৪০ এর দশকে অস্ট্রেলিয়ায় সর্বপ্রথম উট আনা হয়। এর পরের ছয় দশকে ভারত থেতে ২০ হাজার উট আমদানি করা হয়। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পরিমাণ বন্য উট রয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, আনুমানিক ১০ লাখেরও বেশি উট দেশটির মরু এলাকায় রয়েছে। উটকে আপদ হিসেবে গণ্য করা হয় কারণ এগুলো পানির উৎসকে দূষিত করে এবং খাবারের জন্য অনেক দূরে চরতে যাওয়ায় স্থানীয় উদ্ভিদও নষ্ট করে। পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, ঐতিহ্যগতভাবেই স্থানীয়রা উট সংগ্রহ করে সেগুলো বিক্রি করে থাকে। তবে সম্প্রতি শুষ্ক পরিবেশের কারণে জড়ো হওয়া বিশালাকার উটের পাল সামাল দিতে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। আর এ কারণেই "পশু কল্যাণের শর্ত অনুসরণ করে ১০ হাজারের মতো উট মেরে ফেলা হবে," এতে বলা হয়। সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম এবিসি বলেছে যে, মানব বসতি থেকে দূরে উটগুলো মারা হবে এবং সেগুলোর মরদেহ পুড়িয়ে ফেলা হবে। আগামী কয়েক দিনে ১০ হাজার জংলি উট মেরে ফেলবে অস্ট্রেলিয়া। সংবাদ সংস্থা এএফপি এখবর নিশ্চিত করেছে। +text: এ বছর এপ্রিলে কোট সংস্কারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ (ফাইল ফটো)। গতকাল কোটা সংস্কারের জন্য গঠিত সচিব পর্যায়ের কমিটি তাদের প্রাথমিক প্রস্তাবনায় প্রায় সব ধরণের কোটা বাতিল করার সুপারিশ করা হয়। তবে এই কমিটি সবচেয়ে আলোচিত কোটা, অর্থাৎ মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকবে কি থাকবে না, সে ব্যাপারে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছে ওই কমিটি। কোটা ব্যবস্থা বাতিলের এই সুপারিশকে কিভাবে দেখছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা? এমন প্রশ্নের জবাবে আন্দোলনকারী ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহবায়ক হাসান আল মামুন বলছিলেন, "সংস্কারটা কেমন চেয়ে আসছিলাম সেটাই মূল বিষয়।" তিনি জানান, "গত ১৭ই ফেব্রয়ারী থেকে আমরা বর্তমানে সরকারী চাকরীতে যে কোটা ব্যবস্থা আছে ৫৬% সেটার একটা যৌক্তিক এবং সহনীয় সংস্কার চেয়ে আসছিলাম।" মি:মামুন বলছিলেন, "যে যে সেক্টরগুলোতে কোটা রয়েছে যেমন নারী, জেলা, উপজাতি-ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী এবং মুক্তিযোদ্ধা। এসব সেক্টরগুলোতে যে কোটা ব্যবস্থা রয়েছে সেটা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অনেকটাই বেশি।" "সেক্ষেত্রে আমরা চেয়েছিলাম, এই সেক্টরগুলো থেকে কমিয়ে সহনীয় মাত্রায় আনার জন্য। সেটার জন্য আমরা একটা নির্দিষ্ট সীমানা দিয়েছিলাম সেটা হল ১০%।" তিনি আরো বলেন, "আমরা এটাও বলেছি যে আমরা ১০৫ দাবি করেছি কিন্তু সেটা রাখা লাগবে এমনটা না, ১৫% করতে বা ২০% করতে পারে। কিন্তু সরকার এটাকে সম্পূর্ণ বাতিল করে দিচ্ছে এটা আমাদের দাবী বা আন্দোলনের সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।" আরো পড়ুন: কোটা বাতিল চায় কমিটি, দোটানা মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে সরকারি চাকুরিতে কোটা কি রাখতেই হবে? চাকরিতে কোটা নিয়ে এত ক্ষোভের কারণ কী? 'কোটা বাতিল নিয়ে কোন আফসোস থাকবে না' মুক্তিযোদ্ধারা এবং তাদের সন্তানদের জন্য রাখা হয়েছে ৩০ শতাংশ কোটা। 'আদালতে যাবে, অনেকদিন সময় নিবে' সরকারি চাকরীতে কোটার একটা বড় অংশ হলো ৩০% মুক্তিযোদ্ধা কোটা। গতকাল সোমবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকের পর ঢাকায় সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম বলেন, এ বিষয়ে সরকার আদালতের কাছে মতামত চাইবে। "কমিটির সুপারিশ হলো কোটা প্রায় উঠিয়ে দেয়া, মেধাকে প্রাধান্য দেয়া। তবে কোর্টের একটি ভারডিক্ট আছে, সুপ্রীম কোর্টের, যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা প্রতিপালন করতে হবে, সংরক্ষণ করতে হবে এবং যদি খালি থাকে তাহলে খালি রাখতে হবে," জানান সচিব। তিনি বলেন, যদি আদালত এটিকেও মওকুফ করে দেয়, তাহলে কোনো ধরণের কোটা থাকবে না। আর আদালত যদি রায় দেয় ঐ অংশটুকু সংরক্ষিত রাখতে হবে তাহলে ঐ অংশটুকু বাদ দিয়ে বাকি সব উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। তবে এ বিষয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মামুন বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "আমাদের দাবী আসলেই পূরণ হয়নি। কারণ আমরা সংস্কার চেয়ে আসছিলাম আর সরকার বা মন্ত্রিপরিষদ সচিব যেটা দেখাচ্ছেন সেটা আদালতের একটা পর্যবেক্ষেণ।" "কোটা সংস্কারের জন্য আমরা যারা আমরা আন্দোলন করছি তাদের জন্য এক ধরণের প্রহসন।" এটিকে "দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া" হিসেবে ব্যাখ্যা করে তিনি বলছিলেন, "এটা আদালতে যাবে, এবং অনেকদিন সময় নিবে আর আমরা যারা সাধারণ শিক্ষার্থী তারা পড়াশোনা করতে পারছি না।" "আন্দোলনের কারণে আমাদের অনেকে গ্রেফতার অবস্থায় আছে এবং আমরাও গ্রেফতারের আতঙ্কে আছি।" আন্দোলনের ব্যাপারে মি: মামুন জানান, "কোটা সংস্কারের যে পাঁচ দফা দাবী, সেই দাবীতে আমরা অনড় থাকবো। যে পর্যন্ত কোটা একটা যৌক্তিক এবং সহনীয় সংস্কার না হবে সে পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো।" বিবিসি বাংলায় পড়তে পারেন: 'গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ব্যবহার করছিলেন মো সালাহ' কেনিয়ার নারীবেশী পুরুষদের গোপন জীবন কীভাবে গড়ে তুলবেন, ধরে রাখবেন দু'জনের সম্পর্ক? বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের জন্য সচিব কমিটির সুপারিশের পর সেটিকে আন্দোলনকারীরা তাদের দাবীর সাথে "সাংঘর্ষিক" বলে মন্তব্য করেছেন। +text: ভারতে একজন স্বেচ্ছাসেবীকে কোভ্যাক্সিন দেওয়া হচ্ছে। কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা বলেছেন, কোভ্যাক্সিন নামে ওই টিকার নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা সংক্রান্ত উপাত্ত তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের মাধ্যমে পুরোপুরি পর্যালোচনা করে দেখা হয়নি। তার মতে, এটা এক 'বাধ্যতামূলক প্রয়োজন' - কিন্তু তা করা হয়নি। আল-জাজিরা জানাচ্ছে, সাবেক মন্ত্রী শশী থারুরও বলেছেন আগেভাগেই এ অনুমোদন দেয়া হয়েছে এবং এটা বিপজ্জনক হতে পারে। তিনি এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনের কাছে ব্যাখ্যাও দাবি করেছেন। সামাজিক মাধ্যমেও এ নিয়ে অনেককে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। এর আগে ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করে যে ভারত-বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাক্সিন এবং অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকা - দুটিই নিরাপদ এবং তা অবিলম্বে ব্যবহার করা যাবে। তবে বার্তা সংস্থা রয়টার জানাচ্ছে, ভারত-বায়োটেক বা ভারতীয় ওষুধ কর্তৃপক্ষ টিকাটি নিরাপদ বলে জানালেও করোনাভাইরাস ঠেকাতে এর কার্যকারিতা সম্পর্কে পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেনি। তবে রয়টার বলছে, একটি সূত্র তাদের জানিয়েছে যে টিকাটির দুটি ডোজ দেবার পর এর কার্যকারিতা ৬০ শতাংশের বেশি হতে পারে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: ভারতে দেশীয় কোভ্যাক্সিন টিকার অনুমোদন ভারতে ভ্যাকসিন মিলবে হাজার রুপিতে, বাংলাদেশে কত দাম হবে? ভারত থেকে ভ্যাকসিন কিনতে রবিবার অর্থছাড় করবে বাংলাদেশ রয়টার তাদের রিপোর্টে একথাও উল্লেখ করে যে গত বৃহস্পতিবার চীন করোনাভাইরাসের যে টিকাটি অনুমোদন করেছে - সেটির ক্ষেত্রেও কার্যকারিতার বিস্তারিত উপাত্ত প্রকাশ করা হয়নি। কোভ্যাক্সিন নামের টিকাটি ভারতেই আবিষ্কৃত হয়েছে। দেশটির চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণা সংস্থা আইসিএমআরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ভারত বায়োটেক এই ভ্যাক্সিনটি তৈরি করেছে। কোলকাতা থেকে বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা অমিতাভ ভট্টশালী জানান, কোভ্যাক্সিন টিকাটির কার্যকারিতার পরীক্ষার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল এখনও চলছে। মোট ২৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের ওপরে তৃতীয় পর্যায়ের এই 'এফিকেসি ট্রায়াল' চলার কথা, কিন্তু গত সপ্তাহ পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবক নথিভুক্ত হয়েছেন ১৩ হাজারের মতো। অক্সফোর্ডের টিকাকে অনুমোদনের ছাড়পত্র দিয়েছে বিশেষজ্ঞ কমিটি এ পর্যন্ত ভারতে দুটি করোনা ভ্যাক্সিন জরুরীভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা অনুমোদনের জন্য ছাড়পত্র দেয় ওই বিশেষজ্ঞ কমিটি। অক্সফোর্ডের টিকাটি ভারতে উৎপাদন করছে সিরাম ইন্সটিটিউট। অক্সফোর্ড - অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাটি নিরাপদ কীনা তার পরীক্ষা ভারতে ১৬০০ লোকের মধ্যে চালানোর কথা ছিল। কিন্তু ঠিক কতজনের ওপরে পরীক্ষাটি করা হয়েছে এবং তা থেকে কী বেরিয়ে এসেছে, সেই গোপন তথ্য শুধুমাত্র বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছেই জমা দিয়েছে সিরাম ইন্সটিটিউট। এত কম স্বেচ্ছাসেবকের ওপরে পরীক্ষা চালানোর পরেও তারা যে ছাড়পত্র পাওয়ার আবেদন করতে পেরেছে, তার কারণ যুক্তরাজ্যে ইতিমধ্যেই এটি ছাড়পত্র পেয়েছে এবং সেখানে তারা টিকাটির কার্যকারিতা নিয়ে যে তথ্য যুক্তরাজ্যের ওষুধ নিয়ন্ত্রকের কাছে জমা দিয়েছে, সেই একই তথ্য তারা প্রমাণ স্বরূপ ভারতেও জমা দিয়েছে। ভারতের স্থানীয়ভাবে তৈরি একটি করোনাভাইরাসের টিকা সরকার তাড়াহুড়ো করে অনুমোদন করেছে এবং তা 'বিপজ্জনক' হতে পারে - এমন এক হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেস। +text: মাউন্ট এট্‌নার আগুন এবং ধোঁয়া দেখার জন্য প্রতিবছর ট্যুরিস্ট এবং বিজ্ঞানীরা জড়ো হন। তারা হিসেব করে বলছেন, সিসিলি দ্বীপের ওপর এই আগ্নেয়গিরি বছরে ১৪ মিলিমিটার করে ভূমধ্যসাগরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ব্রিটেনের ওপেন ইউনিভার্সিটির ভূবিজ্ঞানের গবেষক ড. জন মার্ফি বলছেন, মাউন্ট এট্‌নার এই সরে যাওয়ার দিকে সতর্কভাবে নজর রাখতে হবে। কারণ এর ফলে নানা ধরনের ঝুঁকি তৈরি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। "আমি বলবো এখন পর্যন্ত এ থেকে শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই," তিনি বলছেন, "তবু এই আগ্নেয়গিরি দিকে সতর্ক নজর রাখতে হবে।" সাধারণ বিবেচনায় বছরে ১৪মি.মি. -- কিংবা ১০০ বছরে ১.৪ মিটার -- সরে যাওয়া খুব বেশি বলে মনে নাও হতে পারে। মাউন্ট এট্‌নার অবস্থান সিসিলির পূর্ব উপকূলে। কিন্তু ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি, যাদের মধ্যে আগে এধরনের প্রবণতা দেখা গিয়েছে, তাদের কারণে মারাত্মক ভূমিধ্স নানা ধর��ের সঙ্কট তৈরি হয়েছে বলে ভূবিজ্ঞানীরা বলছেন। ড. জন মার্ফি মাউন্ট এট্‌না সম্পর্কে গবেষণা চালিয়েছেন প্রায় ৫০ বছর ধরে। এই গবেষণায় তিনি এই পর্বতের নানা জায়গায় জিপিএস স্টেশন বসিয়েছেন। সামান্য নড়াচড়া হলেও এই স্টেশনের যন্ত্রে তা ধরা পড়বে। এসব যন্ত্র থেকে গত ১১ বছরে উপাত্ত থেকেই বিজ্ঞানীরা এখন বলছেন যে মাউন্ট এট্‌না এখন দক্ষিণ-পূর্বমুখী হয়ে একটু একটু করে ভূমধ্যসাগরের দিকে সরে যাচ্ছে। ইউরোপের সবচেয়ে বিপজ্জনক আগ্নেয়গিরি মাউন্ট এট্‌না ধীরে ধীরে সমুদ্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে বিজ্ঞানীরা বলছেন। +text: বাংলাদেশের ৬৯% শিক্ষার্থী দূরশিক্ষণে অংশ নিতে পারেনি। আগামী ৪ঠা ফেব্রুয়ারির আগেই জানিয়ে দেয়া হবে কবে নাগাদ স্কুল খুলতে পারে। এর মধ্যেই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শেষ করতে বলা হবে বলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোন প্রক্রিয়ায় খোলা হবে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে কী ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হবে, সে বিষয়েও বৃহস্পতিবার শিক্ষার দায়িত্বে থাকা দুই মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকরা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা যায়। দুই একদিনের মধ্যে মন্ত্রণালয় দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠাবে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ কারণে গত ১৭ই মার্চ থেকে স্কুল, কলেজসহ সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছিল সরকার, যা আজ অবধি চালু হয়নি। এরই মধ্যে বাতিল হয়েছে পিএসসি, জেএসসি, এইচএসসি এবং সব শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষা। ২০২০ সালের ১৭ই মার্চ থেকে থেকে স্কুলগুলোয় কোন ক্লাস-পরীক্ষা চলছে না এই দীর্ঘ সময় অনলাইন ও সংসদ টিভিতে ক্লাস চললেও ডিভাইস ও নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় ৬৮% শিক্ষার্থীর কাছে সেই সেবা পৌঁছায়নি। গণস্বাক্ষরতা অভিযানের সাম্প্রতিক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। দীর্ঘদিন শিক্ষা কার্যক্রম থেকে দূরে থাকার কারণে এখন ৭৫% শতাংশ শিক্ষার্থী এবং ৭৬% অভিভাবক চাইছেন স্কুলগুলো স্কুলে দেয়া হোক। প্রতিবেশী দেশ ভারত, পাকিস্তানও জানুয়ারিতে স্কুল খুলে দেয়ায় ঢাকার বাসিন্দা মিসেস জাহানারা বেগমও চাইছেন তার সন্তান যেন দ্রুত স্কুলে ফিরতে পারে। "বাসায় থাকতে থাকতে বাচ্চারা খুব ফ্রাস্ট্রেটেড। আগে তো আমি মোবাইল, ল্যাপটপ হাতে দিতাম না। এ��ন ক্লাস, কোচিং করতে সেগুলো তো লাগেই। আর বাকি সময়ও এই ডিভাইস নিয়েই পড়ে থাকে।" "আর অনলাইনের ক্লাস, পরীক্ষায় সঠিক মূল্যায়নটাই হয় না। আমি চাই যতোটা সম্ভব নিরাপদ রেখে স্কুল খুলে দেয়া হোক, অনেক দিন তো হল," বলেন এই অভিভাবক। জাহানারা বেগমের মতো সারা বাংলাদেশের অভিভাবক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের মতামত বিবেচনায় নিয়ে এবার সীমিত পরিসরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষার দায়িত্বে থাকা দুই মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে স্কুল খোলার চিন্তা করছে সরকার। ৪ঠা ফেব্রুয়ারির আগেই স্কুল খোলার প্রস্তুতি শেষ করতে কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠানোর কথা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে চতুর্থ, পঞ্চম, দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। মূলত এসএসসি এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় স্বাস্থ্যবিধি কিভাবে নিশ্চিত করা হবে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন সংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের। তিনি জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করতে অন্তত ৬০টি নির্দেশনা প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে একেকটি বেঞ্চে একজন করে শিক্ষার্থী বসবে। শিক্ষার্থীদের প্রবেশ ও বেরিয়ে যাওয়ার পথ আলদা হবে। একজন ক্লাসে কতোজন শিক্ষার্থী বসবে সেটা নির্ভর করবে ক্লাসের আয়তনের ওপর। উপস্থিত সব শিক্ষার্থীকে বাধ্যতামূলক মাস্ক পড়তে হবে। মাস্ক সরবরাহ করা হবে স্কুল থেকেই। হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং সাবান পানিতে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া স্কুলের শ্রেণীকক্ষ, টয়লেট, স্কুল প্রাঙ্গণ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা, এগুলোর সঠিক সম্পর্কেও সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেয়া হবে। বেসরকারি স্কুল তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে যাবতীয় খরচ বহন করবে। অন্যদিকে সরকারি স্কুলগুলোর খরচ দেবে সরকার। বাংলাদেশে গত কয়েক সপ্তাহ নমুনা পরীক্ষা সাপেক্ষে করোনাভাইরাস সংক্রমণের চার থেকে পাঁচ শতাংশে নেমে এসেছে যেটা গত জুন জুলাই মাসেও ২৫%-৩৫% ছিল। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারনে স্কুল বন্ধ থাকায় বাসায় বন্দি শহরের শিক্ষার্থীরা। শীতের মৌসুমে মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানতে পারে বলে যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, সেটাও হয়নি। এছাড়া করোনাভাইরাসের টিকা চলে আসায় পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসতে পারে বলে সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি গণসাক্ষরতা অভিযান সারাদেশের শিক্ষক শিক্ষার্থী অভিভাবক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ প্রায় ৩,০০০ জনের ওপর জরিপ পরিচালনা করে দেখেছে যে প্রায় ৬৯% শিক্ষার্থী করোনাকালে দূর-শিক্ষণে অংশ নিতে পারেনি। শিক্ষার এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে স্কুলগুলো দ্রুত খুলে দিয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আওতায় শ্রেণী শিক্ষা চালু করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরী। তিনি বলেন, "সমস্ত প্রস্তুতি নিয়ে ধাপে ধাপে শ্রেণী কার্যক্রম শুরু করার জন্য যতো দ্রুত সম্ভব ঘোষণা করা প্রয়োজন। এবং এটি বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষা প্রশাসন ও বেসরকারি সংগঠনকে যুক্ত করে প্রস্তুতি নিতে হবে, সেই ব্যবস্থা মনিটরিং করতে হবে। সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফেব্রুয়ারির মধ্যে স্কুলগুলো খোলার ব্যবস্থা করতে হবে।" আরও পড়তে পারেন: দশ মাসে কী শিখলো শিক্ষার্থীরা? কবে খুলবে স্কুল? নবম থেকে এসএসসি পর্যন্ত পাঁচজনের একজন ঝরে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষা: ৬৫% শিক্ষার্থী বাংলাই পড়তে পারেনা শিক্ষা ব্যবস্থায় কোচিং নির্ভরতা কেন এ পর্যায়ে পৌঁছেছে? এর আগে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিলেন ঢাকার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। এ ব্যাপারে গত ১১ই জানুয়ারি সরকারকে পাঠানো আইনি নোটিশে বলা হয়, দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। তাই ছুটি না বাড়িয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া হোক। দীর্ঘ ১০ মাস বন্ধ থাকার পর ফেব্রুয়ারি থেকে সীমিত পরিসরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় যে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা দ্রুত বাস্তবায়ন প্রয়োজন বলে মনে করছেন শিক্ষা গবেষকরা। +text: ৫২ খাদ্যপণ্য বিএসটিআই কর্তৃক মান পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে সেগুলো হল প্যাকেটজাত লবণ, তেল, হলুদ, লাচ্ছা সেমাই ও বোতলজাত পানি। বাজারের খুব নামকরা সব কোম্পানির খাদ্যপণ্য রয়েছে এর মধ্যে। আর এই বিষয়টি অনেককেই অবাক করেছে। বাংলাদেশের বাজারের নানা ধরনের খাদ্যদ্রব্যের উপর বহুদিন ধরে গবেষণা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইন্সট��টিউটের অধ্যাপক ড. নাজমা শাহীন। তিনি বলছেন, বিএসটিআই যা পেয়েছে তা অনেক ধরেই এসব খাদ্য পণ্যে রয়েছে। জেনে নিন উল্লিখিত পাঁচটি পণ্যে যা পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে আয়োডিনের স্বল্পতার শিকার মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। ১. লবণে আয়োডিনের মাত্রায় হেরফের অধ্যাপক নাজমা শাহীন বলছেন, বাংলাদেশে আইন অনুযায়ী প্যাকেটজাত লবণে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় আয়োডিন মেশানো বাধ্যতামূলক। কারণ বাংলাদেশে আয়োডিনের স্বল্পতার শিকার মানুষের সংখ্যা মারাত্মক হারে বেশি। বিএসটিআইয়ের তালিকায় থাকা প্যাকেটজাত লবণগুলো হয় আয়োডিন দেয়নি, অথবা তার পরিমাণ নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে কম-বেশি হয়েছে। অধ্যাপক শাহীন বলছেন, যখন আয়োডিন সম্পর্কিত আইন করা হয়েছিলো - তখন বাংলাদেশে আড়াইশটর বেশি ফ্যাক্টরিকে লবণে আয়োডিন মেশানোর মেশিন দেয়া হয়েছিলো। আরো পড়ুন: যে ৫২টি পণ্য সরিয়ে নিতে বলেছে হাইকোর্ট মানহীন খাদ্য পণ্য এতদিন পর কেন আলোচনায়? তিনি বলছেন, "কিন্তু আমরা দীর্ঘদিন ধরে মনিটর করেছি। আমাদের অভিজ্ঞতা হল বেশিরভাগই এই মেশিনগুলো ব্যবহার করে না। তারা লবণ পরিষ্কার করার ট্যাংকের ভেতরে পানির সাথে গুলিয়ে আয়োডিন দিয়ে দেয়। তাতে এর মাত্রা ঠিক থাকে না, কম বেশি হয়ে যায়।" তিনি আরও বলছেন, "তার মানে তারা যে শুধু বিএসটিআই-এর পরীক্ষায় ব্যর্থ হল তা নয়। তারা বাংলাদেশের আইনও লঙ্ঘন করলো।" গুড়ো মশলা দেখতে সুন্দর করতে কৃত্রিম রং মেশানো হয়। ২. মশলায় পাওয়া গেছে কৃত্রিম রং বাজারের বেশিরভাগ গুঁড়ো মশলায় কৃত্রিম রং মেশানো হয়। অন্যান্য ভেজালও রয়েছে। নাজমা শাহীন বলছেন, এমন কৃত্রিম রং মেশানোর কারণে হলুদ বা মরিচের গুঁড়ো মশলা দেখতে সুন্দর মনে হচ্ছে - কিন্তু এতে মিশে যাচ্ছে সীসা ও আর্সেনিক। তিনি হলুদের গুঁড়ো সম্পর্কে বলছিলেন, "স্থানীয় অনেক হলুদ আছে যা আস্ত অবস্থায় একটু চিকন ও কালচে ধরনের। যেটা ভাঙানো হলে উজ্জ্বল হলুদ দেখায় না।" "সেগুলোকে গুঁড়ো করে যখন পাউডার মশলা বানানো হয় - তখন তাতে রঙ মেশানো হয়, যার ফলে এতে হেভি মেটাল মিশে যায়। এটি নতুন কিছু না।" লাচ্ছা সেমাইতে ফ্যাট পরিমাণ বেশি পাওয়া গেছে। তিনি একটি নির্দিষ্ট কোম্পানির কথা উল্লেখ করে বলেন, বছর দুয়েক আগে ওই কোম্পানির গুঁড়ো হলুদে সীসা পাওয়া গিয়েছিলো বলে যুক্তরাষ্ট্র সেদেশে সেটির আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা ক��েছিলো। সেখানে প্রচুর বাংলাদেশি দোকানে এটি বিক্রি হতো। ৩. লাচ্ছা সেমাইতে রয়েছে বাড়তি তেল অথবা চর্বি-জাতীয় পদার্থ এই জাতীয় সেমাই খুব জনপ্রিয়। খেতে মজার পাশাপাশি এটি খুব দ্রুত রান্না করা যায়। ময়দা দিয়ে এটি তৈরি করা হয়। অন্যান্য উপকরণের মধ্যে এতে থাকে ফ্যাট জাতীয় পদার্থ। এতে কতটুকু ফ্যাট থাকবে তার অনুমোদিত মাত্রা ঠিক করে দেয়া আছে। কিন্তু বাজারের নাম করা লাচ্ছা সেমাইতে তার পরিমাণ বেশি পাওয়া গেছে। অর্থাৎ মান পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়া লাচ্ছা সেমাইগুলো হয়ত ঘি, ডালডা বা তেল বেশি দিয়েছে। ৪. বোতলজাত পানিতে জীবাণু বেশ কিছু বোতলজাত পানিতে দূষণ পাওয়া গেছে। পানির দূষণ বোঝা যায় এর পিএইচ মাত্রা দিয়ে। অধ্যাপক শাহীন বলছেন, বিশুদ্ধ পানিতে একটি নির্ধারিত পিএইচ মাত্রা রয়েছে। সেই নির্দিষ্ট পিএইচ না থাকা মানে পানিটি বিশুদ্ধ নয়। "এই পানিতে অণুজীব পাওয়া গেছে, বিশুদ্ধ পানিতে যা থাকার কথা নয়।" পানির দূষণ বোঝা যায় এর পিএইচ মাত্রা দিয়ে। ৫. সরিষার তেলে আয়রন থাকার কথা নয় অধ্যাপক নাজমা শাহীন বলছেন সরিষার তেলে কোন আয়রন বা লৌহ জাতীয় পদার্থ থাকার কথা নয়। কিন্তু সেটি পাওয়া গেছে, আর সেজন্যেই এটি বিএসটিআই এর মান পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। তিনি মনে করছেন, সরিষা ভাঙিয়ে যখন প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছে তখন মেশিন থেকে হয়ত মিশে থাকতে পারে। বাংলাদেশে সরিষার তেলে আরেকটি উপায়ে ভেজাল মেশানো হয় বলে জানালেন তিনি। তার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলছেন, "সরিষার তেলের যে ঝাঁঝালো ব্যাপারটা আছে, অন্যধরনের তেলের মধ্যে এক ধরনের কেমিক্যাল মিশিয়ে সেই ঝাঁঝটা বানানো হয়। তার পর সেটিকে সরিষার তেল বলে বিক্রি করা হয়।" বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: বাংলাদেশ ও ভারতের নারী ক্রিকেটের তারতম্য কতটা? 'ইসরায়েলি' প্রযুক্তি দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে নজরদারি কৃত্রিম মাংসের বার্গার, যা থেকে 'রক্ত' ঝরে বাংলাদেশে খাবারে ভেজাল নিয়ে উদ্বেগ বহু দিনের। সম্প্রতি যে ৫২ টি খাদ্য পণ্য বিএসটিআই কর্তৃক মান পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে সেই তালিকায় নির্দিষ্ট পাঁচ ধরনের খাবারের প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে। +text: করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে ছড়াচ্ছে বহু গুজব আর ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বাংলাদেশের মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে এই ট্রায়াল বাংলাদেশে চালানো উচিত বলে মন্তব্য করে বিবৃত��� প্রকাশ করেছে কমিটি। আন্তর্জাতিক বাজারে টিকা আসলে তা শুরুতে কীভাবে বাংলাদেশের মানুষের জন্য পাওয়া সম্ভব, সেই বিষয়গুলো মূলত উঠে এসেছে কারিগরি কমিটির বিবৃতিতে। যেসব প্রতিষ্ঠান বা দেশ টিকার ট্রায়ালের তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে, টিকা বাজারে আসার পর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাওয়া নিশ্চিত করতে তাদের সাথে এখনই যোগাযোগ করার সুপারিশ করেছে কমিটি। পাশাপাশি টিকা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় সিরিঞ্জ উৎপাদন বা কেনার প্রস্তুতি রাখা, টিকা পাওয়ার পর তা সংরক্ষণ, বিতরণের পরিকল্পনা ঠিক করে রাখা এবং টিকা পাওয়ার পর জনসংখ্যার কারা অগ্রাধিকার পাবে তা এখনই ঠিক করে রাখার আহ্বান জানানো হয় কমিটির সুপারিশে। বিবৃতিতে বলা হয়, কয়েকটি সংস্থার টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ব্রাজিল, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, চিলি, সংযুক্ত আরব আমিরাতের পাশাপাশি বাংলাদেশে হলে বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও তা প্রমাণের সুযোগ তৈরি হবে। পাশাপাশি টিকা সফল হিসেবে প্রমাণিত হলে তা বাংলাদেশের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাওয়ার সুযোগও থাকবে। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত লাইভ স্বাস্থ্য বুলেটিন চালিয়ে যাওয়ার পক্ষেও সুপারিশ করা হয় কারিগরি কমিটির বিবৃতিতে। বুলেটিন চালানোর পাশাপাশি সপ্তাহে একদিন গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে প্রশ্নোত্তর পর্বও পরিচালনা করার সুপারিশ করা হয়। করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে কেন ছড়াচ্ছে এত গুজব আর ষড়যন্ত্র তত্ত্ব করোনাভাইরাসের 'রুশ টিকা‌র' পর সামাজিক মাধ্যমে পুতিন মিমের বন্যা বিশ্বের সাতশ কোটি মানুষের কাছে কীভাবে করোনার টিকা পৌঁছন হবে? টিকার মাধ্যমে পৃথিবী থেকে যেসব রোগ নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে করোনাভাইরাস: সুস্থ হয়ে উঠতে কতদিন লাগে? কাদের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে আর কাদের জন্য জরুরি নয় করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় যাদের স্বাস্থ্য সমস্যা আছে তাদের কী করতে হবে করোনাভাইরাসের টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বাংলাদেশে হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করে বিবৃতি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। +text: বারাক ওবামা স্পটিফাইর অনেক গানের প্লে লিস্ট শেয়ার করেছেন স্পটিফাই এখন তাদের ওয়েবসাইটে এমন একটি চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়েছে, যেটি প��ওয়ার যোগ্যতা একমাত্র প্রেসিডেন্ট ওবামারই আছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই কর্মখালির বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, "যোগ্য প্রার্থীর কমপক্ষে আট বছর কোন মর্যাদাশীল দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।" এছাড়াও "যোগ্য প্রার্থীকে অবশ্যই বন্ধুভাবাপন্ন এবং উষ্ণ দৃষ্টিভঙ্গীর অধিকারী এবং নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হতে হবে।" স্পটিফাই এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড্যানিয়েল এক টুইটারে এই বিজ্ঞাপনটির প্রতি প্রেসিডেন্ট ওবামার দৃষ্টিও আকর্ষণ করেছেন। "আমি শুনেছি আমি স্পটিফাই'তে কাজ করতে আগ্রহী। আপনি কি এই বিজ্ঞাপনটি দেখেছেন?" টুইটারে এই বার্তার নীচে তিনি বিজ্ঞাপনটির একটি লিংকও দিয়েছেন। বিজ্ঞাপনের কোথাও অবশ্য বারাক ওবামার উল্লেখ নেই। কিন্তু এতে প্রেসিডেন্ট ওবামার নির্বাচনী প্রচারণার পরিচিত শ্লোগানের শব্দগুলো ব্যবহৃত হয়েছে। নির্বাচিত প্রার্থীকে যেসব কাজ করতে হবে তার তালিকায় আছে স্পটিফাইর জন্য নতুন 'প্লে লিস্ট' এর আইডিয়া খুঁজে বের করা। ' "আপনার বার্থ ডে পার্টিতে কি কখনো কেনড্রিক লামার গান গেয়েছেন? আমরা আপনার কাছ থেকে শুনতে আগ্রহী।" উল্লেখ্য প্রেসিডেন্ট ওবামার ৫৫তম বার্থ ডে পার্টিতে কেনড্রিক লামারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল গান গাওয়ার জন্য। তিনি প্রেসিডেন্ট ওবামার সবচেয়ে প্রিয় র‍্যাপ শিল্পী। প্রেসিডেন্ট ওবামার সঙ্গে মেয়ে মালিয়া। হোয়াইট হাউসের পার্টিতে ওবামা অনেক বিখ্যাত শিল্পীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বিজ্ঞাপনটিতে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে অনেক তির্যক মন্তব্যও আছে। উল্লেখ্য প্রেসিডেন্ট ওবামা ২০১৫ সাল থেকে নিয়মিত স্পটিফাইতে তার প্রিয় গানের প্লে লিস্ট শেয়ার করছেন। তার প্রিয় শিল্পীদের তালিকায় আছেন নিনা সিমোন থেকে শুরু করে বব মার্লি। স্পটিফাই একটি সুইডিশ কোম্পানি। সুইডেনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূতের স্ত্রী নাটালিয়া ব্রেজিনস্কিকেই নাকি প্রেসিডেন্ট ওবামা গত সপ্তাহে মজা করে বলেছিলেন তিনি স্পটিফাইতে একটি চাকরির জন্য অপেক্ষা করছেন! নাটালিয়া ব্রেজিনস্কি এটি আবার টুইটারে পোষ্ট করেন। সেখানে তিনি জানান সুইডেন প্রেসিডেন্ট ওবামার খুব পছন্দের দেশ। শীঘ্রই তিনি সুইডেন সফরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। প্রেসিডেন্ট ওবামা আর এক সপ্তাহখানেক পরেই তাঁর মেয়���দ শেষে অবসরে যাচ্ছেন। এরপর তিনি কি করবেন তা এখনো জানা যায়নি। তবে এ নিয়ে যে নানা ধরণের আলোচনা চলছে তার মধ্যে কমিউনিটি সংগঠক, শিক্ষকতা, বা সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে তিনি কাজ করতে পারেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ওবামা অবশ্য বলেছেন, তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হতে চান না। বরং তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টির পরবর্তী প্রজন্মের নেতা তৈরি করা বা পারলে এনবিএ'র কোন বাস্কেটবল টিমের দায়িত্ব নিতে চান। প্রেসিডেন্ট ওবামা সম্প্রতি বেশ রসিকতা করেই বলেছিলেন, অবসরে যাওয়ার পর তিনি অনলাইন মিউজিক স্ট্রীমিং সার্ভিস স্পটিফাই'তে একটা কাজ পবেন বলে আশা করেন। +text: নিষেধাজ্ঞার কারণে বেড়ে গেছে দাম ও কমেছে স্থানীয় মুদ্রার দাম যদিও ওয়াশিংটন এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। ইরানের জন্য আমেরিকার বিশেষ প্রতিনিধি ব্রায়ান হুক বলেছেন, "ইরানের জনগণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ঔষধ ও চিকিৎসা সামগ্রী নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রেখেছে"। যদিও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ বলছেন, ফার্মাসিউটিক্যালসের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়েছে কারণ ঔষধ কিনতে আর্থিক লেনদেনের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কোন ধরণের ঔষধ ইরান আমদানি করে? প্রয়োজনীয় প্রায় সব মৌলিক ঔষধই ইরান নিজে উৎপাদন করে কিন্তু যখন এডভান্সড মেডিসিনের প্রসঙ্গ আসে তখন দেশটিকে আমদানির ওপরই নির্ভর করতে হয়। এক হিসেবে দেখা যায়, ইরানের প্রয়োজনীয় ঔষধের চার শতাংশ তাদের বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। তবে আমদানি করা ঔষধ ও তাদের মূল্যের ওপর কম তথ্যই পাওয়া যায়। বিবিসির পার্সিয়ান সার্ভিস তাদের দর্শকদের কাছ থেকে ঔষধের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি জানতে পেরেছে। একজন ভুক্তভোগী বলছেন গুরুত্বপূর্ণ একটি ঔষধ পেতে যে সমস্যা হচ্ছে তার কথা। "ঔষধটি পেতে আমাকে অন্য কয়েকটি শহরে যেতে হয়েছে যে সেখানকার ফার্মেসিগুলোতে আছে কিনা। কয়েকটিতে আছে কিন্তু দাম এতো বেশি যে আমার ক্রয়ক্ষমতার বাইরে"। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: হরমুজ প্রণালী ইরানের কাছে কেন এতো গুরুত্বপূর্ণ? আমেরিকার সাথে যুদ্ধ হলে ইরান ধ্বংস হবে - ট্রাম্প ইরান বিপ্লবের পর কী হয়েছিল খোমেনির সহযোগীদের একটি ঔষধের দোকান বিবিসি ইরানের অভ্যন্তরে একজন ঔষধ আমদানীকারকের সাথেও কথা বলেছে। তিনি বলছেন গত দু'বছরে ঔষধের ঘাটতি দেখা দিয়েছে এবং দামও বেড়ে গেছে। বিশেষ করে অচে��ন করা, ক্যান্সার চিকিৎসা ও ডায়াবেটিসের ঔষধ পাওয়াটাই কঠিন হয়ে উঠেছে। এছাড়া ইরান সরকারের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে স্বাস্থ্য ও মেডিকেল সেবার খরচ বেড়েছে ১৯ শতাংশ। তবে ঔষধের এই ঘাটতি ও দাম বাড়ার পেছনে আরও অনেক কারণ থাকতে পারে। নিষেধাজ্ঞা কিভাবে কার্যকর হচ্ছে? ইরানের সাথে বিশ্বশক্তিগুলোর পরমাণু চুক্তির পর ২০১৬ সালে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছিলো। কিন্তু ২০১৮ সালে আবার যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে যা কার্যকর হয় শিল্প ও ব্যাংক খাতে। তবে ঔষধের মতো মানবিক সরবরাহ এবং এসবের সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলো শাস্তির আওতায় থাকা উচিত নয়। "কিন্তু সমস্যা হলো, ব্যবসা চালু রাখতে হলে একটি ব্যাংক পেতে হবে এসব বিষয়ে লেনদেনের জন্য," বলছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ রিচার্ড নিপিয়ো। ইরানিরা বলছে মেডিকেল উপকরণ বা যন্ত্রপাতির দামও বেড়ে গেছে তিনি বলছেন ব্যাংক পাওয়াটাই একটা বড় সমস্যা। আবার সব ঔষধ বা মেডিকেল সেবা নিষেধাজ্ঞার বাইরে নয়। ইউকে ফিন্যান্সের পরিচালক জাস্টিন ওয়াকার বলছেন, "মানবিক সেবার বাণিজ্য ও পেমেন্ট ইরানের সত্যিই জটিল বিষয়"। ঔষধ যাচ্ছে ইরানে ? ইরানের সরকারি হিসেবে গত ১৬ মাসের ঔষধ ও উপকরণ আমদানির একটি চিত্র পাওয়া গেছে। সেপ্টেম্বর ২০১৮তে আমদানি ১৭৬ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিলো এবং এরপরই এটি কমতে শুরু করে। চলতি বছর জুড়ে ৬০ শতাংশ কমে মাত্র ৬৭ মিলিয়ন ডলারে নেমে যায়। কিন্তু সব তথ্য পাওয়া কঠিন হওয়ায়, নিশ্চিত করে বলা যায়না যে এটি নিষেধাজ্ঞার জন্যই হয়েছে। ইরানের বাণিজ্যিক অংশীদার ইইউ'র কাছ থেকেও কিছু তথ্য পাওয়া যায়। গত বছর নভেম্বরে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পর ইরানের কাছে ঔষধ সামগ্রীর বিক্রিও কমে যায় আগের তুলনায়। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ ইরানের সাথে বাণিজ্যে ঝুঁকি জাস্টিন ওয়াকার বলছেন, ব্রিটেনের ব্যাংকগুলোর জন্য মেডিকেল সামগ্রী ইরানে পাঠানো কঠিন তাই এখন সীমিত আকারে ব্যবসা হচ্ছে। আসলে নিষেধাজ্ঞার পর ইরানের সাথে বাণিজ্য পদ্ধতিই ঔষধ আমদানি কঠিন করে তুলেছে। এ কারণেই গুরুত্বপূর্ণ ঔষধের সংকট দেখা দিয়েছে ও দাম বেড়ে যাচ্ছে ইরানের বাজারে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক বিধিনিষেধ এড়িয়ে ইউরোপীয়রা সহায়তার যে পরিকল্পনা নিয়েছে তার দ্রুত বাস্তবায়নের আহবান জানাচ্ছে ইরান। যদিও এটি রাজনৈতিকভাবে আসলেই কঠিন। ইরান বলছেন চিকিৎসা সামগ্রী বিশেষ ছাড় পাওয়ার কথা থাকলেও নিষেধাজ্ঞার কারণে জীবন রক্ষাকারী ঔষধ পাচ্ছেনা তারা। +text: নিরাপদ সড়ক আন্দোলন: জিগাতলায় যা ঘটেছিল শনিবার শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মীরা বলছেন, তাদের কেউ ওই হামলা সঙ্গে জড়িত নয়। ওই সংঘর্ষে অন্তত ২৫জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে, যাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।। গত কয়েকদিন ধরে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সড়কে চালকদের লাইসেন্স পরীক্ষা করছে। শনিবার ঠিক কি ঘটেছিল ধানমণ্ডিতে? প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে এবং ঘটনাস্থল ঘুরে জানা গেল, জিগাতলার মোড়ে কিছু শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়ে গাড়ির কাগজপত্র দেখছিল। দুপুরের পরে হঠাৎ করে হেলমেট পড়া একদল যুবক এসে লাঠিসোটা নিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রথমে পিছু হটে গেলেও একটু পরে সংগঠিত হয়ে তাদের ধাওয়া করে। এরপর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি চলে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: নিরাপদ সড়ক: জিগাতলায় হামলা, শাহবাগে চকলেট নিরাপদ সড়ক: জিগাতলায় মিছিলে কাঁদানে গ্যাস ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সমতা ফেরালো বাংলাদেশ মোটরসাইকেলে হেলমেট পড়া যে যুবকরা ছিল, তারা পিস্তল উঁচিয়ে ফাঁকা গুলি করেছে বলেও জানিয়েছেন কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী। কিছুক্ষণ পরে এই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া থেমে যায়। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, হেলমেট পড়া যুবকরা তাদের কর্মী নয় বা তাদের কোন কর্মী সমর্থক এই হামলা করেনি। এদের কাউকে তারা চেনে না। তবে ঘটনার শুরু সম্পর্কে ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, আন্দোলনরত একজন শিক্ষার্থীকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন কর্মী ডেকে কথা বলেন। কিন্তু কথা ছড়িয়ে পড়ে যে তাকে চড়থাপ্পর দেয়া হয়েছে, এরকম কথা ছড়িয়ে পড়ার পর সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় বলে তারা বলছেন। শনিবার ঢাকার সায়েন্স ল্যাব মোড়ে পুলিশ বক্স ভাংচুর করা হয়। এই ঘটনার কিছু পরে বেশ কয়েকটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাদের কাছে খবর আসে যে, একজনকে জিগাতলায় আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ের পাশে নির্বাচনী অফিসে ধরে নিয়ে পিটিয়ে মার��� হয়েছে। আরো গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, আওয়ামী লীগ অফিসের ভেতর একটি মেয়েকে ধরে নিয়ে ধর্ষণ করা হচ্ছে। তখন বিভিন্ন স্থান থেকে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা এসে জিগাতলায় জড়ো হন। তারা স্বীকার করেছেন যে, এসব তারা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অফিসে ইটপাটকেল ছোড়ে। তখন তাদের মধ্যে কয়েক দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এসময় দুই পক্ষেই অনেকে আহত হন। কাছেই পপুলার নামের একটি হাসপাতালে দুই পক্ষ মিলিয়ে ২৫জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পুরো ঘটনার সময় পুলিশ নিষ্ক্রিয় অবস্থান নিয়েছিল বলে বলেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শান্ত থেকে ঘরে ফিরে যাওয়ার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকাল সাড়ে ৫টার পর ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কয়েকজনকে আওয়ামী লীগের অফিসের ভেতরে নিয়ে যান। তাদের তারা অফিসটি ঘুরিয়ে দেখান। সেই শিক্ষার্থীরা বাইরে বেরিয়ে এসে বলেন, তারা যা শুনেছে, তা সঠিক নয়। এরপর আরো কয়েকজন শিক্ষার্থীকে এসে আওয়ামী লীগ অফিসের ভেতরে ঘুরিয়ে দেখানো হয়। পুলিশও কয়েকজনকে নিয়ে এসে অফিসটি দেখায়। এরপর শিক্ষার্থীরা শান্ত হন। সন্ধ্যার দিকে পুরো এলাকাটি শান্ত হয়ে আসে। ধানমণ্ডি থানার পুলিশ জানিয়েছে, শনিবারের ওই ঘটনায় কোন মামলা হয়নি। পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ছাত্র নিহত বা ধর্ষণের যেসব গুজব রটানো হয়েছে, তারা তদন্ত করে তার কোন প্রমাণ খুঁজে পাননি। আরো পড়তে পারেন: মার্কিন রাষ্ট্রদূতের উপস্থিতিতে ‘সুজন’ সম্পাদকের বাড়িতে হামলা ড্রোন বোমা থেকে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্টের রক্ষা নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শনিবার আওয়ামী লীগ কর্মীদের সাথে সংঘর্ষে ঢাকার ধানমণ্ডির জিগাতলা এবং সায়েন্স ল্যাব মোড় অনেকটা রণক্ষেত্রে রূপ নিয়েছিল। তবে সন্ধ্যার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয়। +text: নিপাহ ভাইরাসের উৎস হতে পারে বাদুড় দুটি ভাইরাসই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বড় ধরনের প্রাদুর্ভাব হতে পারে এমন প্রাণঘাতী রোগের তালিকায় আছে। ২০১৫ সাল থেকেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অগ্রাধিকারে থাকা প্রাণঘাতী রোগগুলোর একটি তালিকা করেছে যেগুলো নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন। সংস্থাটি এসব রোগকে জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করছে কারণ এগুল��� মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর বিজ্ঞানী বা গবেষকদের হাতে এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ঔষধ বা টীকার মতো প্রয়োজনীয় উপকরণ নেই। ইবোলা ও নিপাহ ভাইরাসের মতো ওই তালিকায় এমন আরও আটটি রোগ রয়েছে। নিপাহ ভাইরাস নিপাহ ভাইরাস বাদুড় থেকে পশুপাখি ও মানুষের মধ্যেও সংক্রমিত হতে পারে। জ্বর, বমি কিংবা মাথা ব্যথা এ রোগের লক্ষ্মণ। মানুষ কিংবা পশুপাখি কারও জন্যই কোন প্রতিষেধক এখনো বের হয়নি। এ রোগে মৃত্যুর হার ৭০ শতাংশ। আরো পড়ুন: যে গ্রামে মৃতদের খাবার না দিয়ে কেউ খায় না ডিম খাওয়া নিয়ে বিজ্ঞানীদের মত বদলাচ্ছে কেন? বাংলাদেশে রোজা পালনকারীর জন্য জরুরী ১১টি পরামর্শ ১৯৯৮ সালে মালয়েশিয়ায় শূকরের মধ্যে প্রথম এ রোগ চিহ্নিত হওয়ার পর সেখানকার কৃষি শহর নিপাহ'র নামে ভাইরাসটির নামকরণ হয়েছে। পশুপাখি থেকে প্রায় তিনশ মানুষের এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে যার মধ্যে অন্তত একশ জনের মৃত্যু হয়েছে। হেনিপেভিরাল রোগ হেনড্রা ভাইরাস প্রথম চিহ্নিত হয় অস্ট্রেলিয়ায়। এটাও বাদুড় থেকেই থেকেই হয় এবং ঘোড়া ও মানুষ ভয়াবহ আক্রান্ত হতে পারে। ১৯৯৪ সালে ব্রিসবেনের একটি শহরতলীতে এটির প্রথম প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এর পর থেকে অন্তত ৭০টি ঘোড়া এতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে আর আক্রান্ত সাত জনের মধ্যে চার জন মারা গেছে। সিসিএইচএফ ক্রাইমিয়ান কঙ্গো হেমোরেজিক ফিভার বা সিসিএইচএফ এক ধরনের এঁটেল পোকা (টিকস পতঙ্গ) থেকে ছড়ায়, যা মানুষের মধ্যে বড় প্রাদুর্ভাবের কারণ হতে পারে। এতে মৃত্যু হার ৪০ শতাংশ। ক্রাইমিয়াতে ১৯৪৪ সালে প্রথম ও পরে কঙ্গোতে এটি চিহ্নিত হয়। ভাইরাসটি পুরো আফ্রিকা, বলকান অঞ্চল ও মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়ার কিছু এলাকায় পাওয়া যেতে পারে। এই রোগে হঠাৎ করেই কেউ আক্রান্ত হতে পারে যার লক্ষ্মণ মাথাব্যথা,বেশি জ্বর, মেরুদণ্ড ব্যথা, পাকস্থলীতে ব্যথা ও বমি। কেরালায় নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সম্প্রতি ইবোলা ভাইরাস ধারণা করা হয় এটিও প্রথম বাদুড় থেকেই এসেছে এবং ১৯৭৬ সালে কঙ্গোর ইবোলা নদীর কাছে এটির প্রথম প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। বন্য প্রাণী থেকে এটি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আবার মানুষ থেকে মানুষেও এটি ছড়াতে পারে। ভয়াবহ এই রোগে মৃত্যু হার ৫০শতাংশের মতো। ২০১৪ ও ২০১৬ সালে মধ্য আফ্রিকায় বড় প্রাদুর্ভাবে অন্তত ১১ হাজার মানুষ মারা গেছে। মারবুর্গ ভাইরাস এটি প্রায় ইবোলার কাছাকাছি একটি ভাইরাস। আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে অন্য কেউ এতে সংক্রমিত হতে পারে। ইবোলার মতোই এর উৎস হিসেবে বাদুড়কেই ভাবা হয়। এতে আক্রান্ত হলে আট থেকে নয় দিনের মধ্যেই কারও মৃত্যু হতে পারে। জার্মান শহর মারবুর্গের নামে এর নামকরণের কারণ হলো ১৯৬৭ সালে এখানে প্রথম ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। পরে তা ফ্রাঙ্কফুর্ট ও সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডেও ছড়িয়ে পড়ে। সার্স সার্স অর্থাৎ সিভিয়ার একিউট রেসপিরেটরি ভাইরাসের উৎপত্তি চীনে। বিজ্ঞানীরা বলছেন খাটাশ জাতীয় বিড়াল থেকে ভাইরাসটি এসেছে । তবে এটিও বাদুরের সঙ্গে সম্পর্কিত। ২০০২ থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে দু'বার এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। আট হাজারের বেশি আক্রান্তের মধ্যে ৭৭৪ জনের মৃত্যু হয়। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হলে ভয়াবহ শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। তবে ২০০৪ সালের পর থেকে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। জিকা ভাইরাস আক্রান্ত এলাকায় ভ্রমনের বিষয়ে গর্ভবতী মায়েদের সতর্ক করা হয় মার্স এটি সার্সের একই গোত্রীয় একটি ভাইরাস। ২০১২ সালে প্রথম সৌদি আরবে এই ভাইরাসের অস্তিত্ব আবিষ্কৃত হয় এবং সেখানে আক্রান্তদের ৩৫শতাংশ মারা গেছেন। এই রোগের নাম দেওয়া হয় মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম বা সংক্ষেপে মার্স। করোনা ভাইরাস গোত্রীয় বলে ভাইরাসটির নাম মার্স করোনা ভাইরাস। সৌদি আরব ছাড়াও এর উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে ওমান, আরব আমিরাত, মিসর ইত্যাদি মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কটি দেশে। ধারণা করা হচ্ছে, মানবদেহে এই ভাইরাস এসেছে উট থেকে। কাতার, ওমান, সৌদি আরব ও মিসরে উটের রক্তেও মার্স ভাইরাসের অস্তিত্ব পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এ ছাড়া সৌদি আরবে বাদুড়ের রক্তেও পাওয়া গেছে এই ভাইরাস। মানুষ থেকে মানুষে ভাইরাস ছড়িয়েছে হাঁচি, কাশি, নিকট অবস্থান ইত্যাদি থেকে। রিফট ভ্যালি ফিভার (আরভিএফ) মশা বা রক্ত খেয়ে থাকে এমন পতঙ্গ থেকে এই ভাইরাসের সূচনা হয় যা গরু বা ভেড়াকে আক্রান্ত করে থাকে। কিন্তু এটিও পরে মানবশরীরে সংক্রমিত হতে পারে। বেশী আক্রান্ত হলে মানুষের নানা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ অকার্যকর হয়ে যেতে পারে। মূলত আক্রান্ত পশু থেকে এটি মানুষের শরীরে আসে। এমনকি আক্রান্ত গরু বা ভেড়ার দুধ থেকেও এটি সংক্রমিত হতে পারে। ১৯৩১ সালে কেনিয়ার রিফট ভ্যালিতে প্রথম এ ভাইরাসটি চিহ্নিত হয়। জিকা ভাইরাস মশার মাধ্যমে দ্রুত এ ভাইরাসটি ছড়ায়। ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটেছে এমন কোনো রোগীকে এডিস মশা কামড়ানোর মধ্য দিয়ে এর স্থানান্তর হয়। পরে ওই মশাটি অন্য ব্যক্তিদের কামড় দিলে তা ছড়াতে থাকে। এরপর ওই ব্যক্তিদের মাধ্যমেই ভাইরাসটির বিস্তার ঘটতে থাকে। তবে যৌন সংসর্গের মাধ্যমেও রোগটি ছড়াতে পারে। উগান্ডার জিকা ফরেস্ট এলাকায় বানরের মধ্যে ১৯৪৭ সালে এটি আবিষ্কৃত হয়। তবে আফ্রিকা ও এশিয়ায় এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ২০০৫ সালে অ্যাঙ্গোলায় মারবুর্গ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে দুশোর মতো মানুষ লাসা জ্বর লাসা জ্বর সংক্রমিত চর্বি, ইঁদুরের প্রস্রাব দ্বারা দূষিত খাদ্য এবং ইঁদুরের স্পর্শ করা খাবার থেকে ছড়ায়। এই রোগে আক্রান্ত হলে জ্বরের সঙ্গে শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তক্ষরণ হতে পারে এবং চোখে ও নাকে সংক্রমণ হতে পারে। লাসা জ্বরটি পশ্চিম আফ্রিকা বিশেষ করে নাইজেরিয়াতেই বেশি দেখা যায়। দেশটির লাসা শহরে এ রোগটি প্রথম দেখা দিয়েছিল ১৯৬৯ সালে। ডিজিজ এক্স বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পৃথিবীব্যাপী মহামারি ঘটাতে পারে এমন অসুখের তালিকায় নতুন রহস্যময় অসুখ 'ডিজিজ এক্স' এর নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে।ডিজিজ এক্স শুনে অপরিচিত মনে হতে পারে। এটি কোন রোগের নামও নয়। তালিকায় থাকা এই নামের ব্যাপারে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, ডিজিজ এক্স হলো এমন কোনও রোগ যা মানবজাতির কাছে এখনো অজানা, কিন্তু তা আন্তর্জাতিকভাবে মহামারীর রূপ নিতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, 'একটা অজানা রোগে পৃথিবীজুড়ে ব্যাপক মহামারী দেখা দিতে পারে বলে আমরা অনুমান করছি এটা বুঝাতেই 'ডিজিজ এক্স' সম্ভাব্য মহামারীর তালিকায় যোগ করা হয়েছে।' মধ্য আফ্রিকায় সাম্প্রতিক সময়ে ইবোলা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর দক্ষিণ ভারতে আরেকটি প্রাণঘাতী ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে - আর সেটি হলো নিপাহ ভাইরাস। +text: ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারের সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বৃহস্পতিবার ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারের সঙ্গে বৈঠকে এই আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এসব কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। "যুক্তরাষ্ট্রের ৬০ মিলিয়ন ডোজ টিকা অতির��ক্ত রয়েছে। আমরা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের জন্য ১০ থেকে ২০ মিলিয়ন টিকা চেয়েছি।" বাংলাদেশ সরকার এ সংক্রান্ত একটি চিঠিও দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষের কাছে, সেখানে 'ইমিডিয়েট নীড' হিসেবে ৪০ লক্ষ ডোজ ভ্যাকসিন চাওয়া হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য সরকার সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনো ভারতকে কোন টিকা দেয়নি বলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত তাকে জানিয়েছেন। আরো পড়তে পারেন: বাংলাদেশে টিকা পেতে অনিশ্চয়তা, রাশিয়া ও চীন থেকে আনার চেষ্টা বাংলাদেশ এবার ইউরোপ আমেরিকা থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আনতে চাইছে চীনা টিকার অনুমোদন দিলো বাংলাদেশ, দেশেই উৎপাদন হবে রাশিয়ার টিকা 'স্পুটনিক ভি' নিয়ে যা জানা যাচ্ছে এছাড়া রাশিয়া থেকে টিকা আনার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া থেকে কবে টিকা আসবে, কতটুকু আসবে - সেটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নির্ধারণ করবে। তিনি বলেছেন, "তবে দেশটির সাথে আলোচনার প্রেক্ষাপটে রাশিয়া একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে, যার ভিত্তিতে তারা ভ্যাকসিন দেবে বা কো-প্রোডাকশনে যাবে। সে প্রস্তাব এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরীক্ষা করে দেখছে।" বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকার যোগানে ঘাটতি থাকায় ২৬শে এপ্রিল প্রথম ডোজ টিকা দেয়া বন্ধ করার পর বুধবার ৫ই মে টিকা নিতে নিবন্ধন বন্ধ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সরকার বলছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচীর নিবন্ধন বন্ধ থাকবে। এদিকে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন, তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেবার ক্ষেত্রে এখন ১৩ লাখ ডোজের বেশি টিকার ঘাটতি তৈরি হয়েছে। মূলত সিরাম ইন্সটিটিউটে তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ডের ওপর নির্ভর করেই বাংলাদেশ টিকা দেয়ার কার্যক্রম শুরু করেছিল। এখন সরকার বিকল্প হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সাথে যোগাযোগ করছে বলে জানানো হয়েছিল। ২০২০ সালে ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউটের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর হবার পর, সব মিলে বাংলাদেশ হাতে পেয়েছে মোট এক কোটি দুই লাখ ডোজ টিকা। গত জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত থেকে দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। এরপর মার্চ ও এপ্রিলে কোন টিকা আসেনি। এর মধ্যে এপ্রিলের শেষ দিকে ভারত থেকে অদূর ভবিষ্যতে টিকা পাওয়া যাবে না এমন আভাস দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এক থেকে দুই কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা চাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দেশের চলমান টিকা কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে অন্তত ৪০ লাখ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা চাওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। +text: বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সামরিকায়িত অঞ্চলগুলোর একটি কাশ্মীর রাজ্যের টেলিফোন, মোবাইল এবং ইন্টারনেটের সংযোগ রবিবার সন্ধ্যায়ই বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয় এবং সেগুলো এখনও ঠিক করা হয়নি। কাশ্মীরের রাস্তায় হাজার হাজার সেনা টহল দিচ্ছে। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সরিয়ে নেয়ায় ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। কিন্তু এমন ঘোষণায় সেখানকার মানুষ কী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে - সেবিষয়ে এখন পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। স্থানীয় নেতাদের এরই মধ্যে আটক করা হয়েছে। ভারত শাসিত কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরের বিবিসি সংবাদদাতা আমির পীরজাদা সোমবার দিল্লির প্রতিনিধির সাথে কথা বলতে সক্ষম হন। তিনি বলেন, "রাজ্যের অন্যান্য অংশে কী হচ্ছে তা কেউ জানে না - আমরা কারো সাথে কথাও বলতে পারছি না। মানুষ ভীষণ চিন্তিত - তারাও জানে না আসলে এখন কী হচ্ছে এবং কী হতে যাচ্ছে।" ভারতের অন্যান্য স্থানে থাকা কাশ্মীরিরা তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন না এবং সেবিষয়ে তাদের শঙ্কার বিষয়ে জানিয়েছেন। দিল্লিতে থাকা এক ছাত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকাকে জানিয়েছেন যে তিনি স্থানীয় পুলিশের সাথেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছেন - কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। অনেক কাশ্মীরি মনে করেন, সংবিধানের যে ৩৭০ অনুচ্ছেদ কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দিত - সেটিই ছিল রাজ্যটির ভারতের অংশ থাকার পেছনে প্রধান যুক্তি। আর ঐ অনুচ্ছেদ বিলোপের মাধ্যমে দিল্লির সাথে কাশ্মীর অঞ্চলের সম্পর্কের যে ক্ষতি হয়েছে, তা অপরিবর্তনীয়। অনুচ্ছেদ ৩৭০ কাশ্মীর রাজ্যকে বিশেষ ধরণের স্বায়ত্বশাসন ভোগ করার সুযোগ দিত যার ফলে তারা নিজস্ব সংবিধান, আলাদা পতাকা এবং আইন প্রণয়নের অধিকার রাখতো - যদিও পররাষ্ট্র বিষয়ক সিদ্ধান্ত, প্রতিরক্ষা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল কেন্দ্রীয়স সরকারের হাতে। আরো পড়তে পারেন: আদালতে যাবে বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত? মুসলিম-প্রধান কাশ্মীরের চরিত্র বদলানোই মূল লক্ষ্য? কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নিল ভারত সরকার কাশ্মীরের জন্য বিশেষ আইন কেন বিতর্কিত? পর্যটকদের এলাকা ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয় যার ফলে, জম্মু ও কাশ্মীর নাগরিকত্ব, সম্পদের মালিকানা এবং মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত আইন নিজেরা তৈরি করার ক্ষমতা রাখতো। ভারতের অন্যান্য রাজ্যের মানুষকে জম্মু ও কাশ্মীরে জমি কেনা এবং সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করা থেকেও বিরত রাখতে পারতো ঐ অনুচ্ছেদের বদৌলতে। ভারত এবং পাকিস্তান দুই দেশই সম্পূর্ণ কাশ্মীরের অধিকার দাবি করলেও দুই দেশই রাজ্যটির কিছু নির্দিষ্ট অংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ভারত শাসিত কাশ্মীরে অনেকদিন ধরেই বিদ্রোহ হয়ে আসছে যার ফলে এখন পর্যন্ত বহু বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এখনো বন্ধ সব যোগাযোগ ভারতের সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অনুচ্ছেদ ৩৭০ এর বিলোপের ঘোষণা দেয়ার কয়েকদিন আগে থেকেই কাশ্মীর উপত্যকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সংসদে ঘোষণা দেয়ার কয়েকদিন আগে ঐ অঞ্চলে অতিরিক্ত দশ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়। পর্যটকদের ঐ এলাকা ছেড়ে যেতে বলা হয়, হিন্দু তীর্থযাত্রীদেরও নির্দেশ দেয়া হয় ঘরে ফিরে যেতে। স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেয়া হয় এবং কোন পরিকল্পনা সম্পর্কে কোন ইঙ্গিতও দেয়া হয়নি। কাশ্মীর বিখ্যাত তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য ঐ অঞ্চলে থাকা বিবিসি সংবাদদাতা জানান, স্থানীয়রা সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে কয়েকমাসের খাবার মজুদ করে রাখেন। সব ধরণের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হবে ধারণা করে পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য স্যাটেলাইট ফোন বরাদ্দ করা হয়। রবিবার রাতে দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রীকে গৃহবন্দী করার সময়ই সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। সেসময় থেকে ঐ অঞ্চল কার্যত পুরো বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সেখান থেকে কোনো কিছুরই তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ'র ঘোষণার পর অতিরিক্ত সেনাও মোতায়েন করা হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা কখন ঠিক হবে, সেবিষয়ে কোনো ইঙ্গিত দেয়া হয়নি। তবে স্থানীয়ভাবে পাওয়া খবর থেকে জানা যাচ্ছে যে সাধারণ মানুষকে ঐ অঞ্চলে প্রব��শ করতে বাধা দেয়া হচ্ছে না। ভারত শাসিত কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দিত সংবিধানের যে ৩৭০ অনুচ্ছেদ, তা বিলোপের একদিন পরেও ঐ এলাকা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। +text: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘর থেকে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। তবে লকডাউনের মতো একটি বিষয় দীর্ঘদিন চালিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। কারণ এতে মানুষের জীব-জীবিকা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সম্প্রতি বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে সরকার ৫ই এপ্রিল থেকে বিভিন্ন ধরণের বিধি-নিষেধ জারি করেছে। আগামী ৫ই মে পর্যন্ত চলবে এই বিধি-নিষেধ। কিন্তু লকডাউন তুলে নিলেও সংক্রমণ যাতে না বাড়ে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে 'লকডাউন' থেকে বেরিয়ে আসার একটি কৌশল ঠিক করেছে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি। এ সংক্রান্ত সুপারিশগুলো ইতোমধ্যে সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। আরও পড়তে পারেন: গণপরিবহনে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী চলতে পারবে। এই কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদি কৌশল হিসেবে ১০টি সুপারিশ করেছেন তারা। এসব সুপারিশ হল: ১. অবশ্যই মুখে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। ঘর থেকে বের হাবার সাথে সাথে যেন মুখে মাস্ক থাকে। যেখানে ভাইরাসের ঘনত্ব বেশি যেমন - গণপরিবহন, সুপার মার্কেট, বাজার, ব্যাংক, হসপিটাল - এসব জায়গায় কেউ মাস্ক ছাড়া যেতে পারবে না। মাস্ক না পরলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা থাকতে হবে। ২. অফিসে উপস্থিতি অর্ধেক করার প্রস্তাব করেছে জাতীয় পরামর্শক কমিটি। তবে উপস্থিতি এক-তৃতীয়াংশ হলে ভালো হয়। অফিসগুলোতে ভার্চুয়াল মিটিংকে উৎসাহ দিতে হবে। অফিসগুলোতে যেন দলবেঁধে খাওয়া-দাওয়া না চলে। সবাই যেন আলাদাভাবে তাদের খাওয়া সেরে নেয়। মার্কেট এবং শপিংমলে ভিড় কমানোর ব্যবস্থা করতে হবে। ৩. গণপরিবহন যেন তাদের সক্ষমতার ৫০ ভাগ যাত্রী বহন করে। এই নিয়ম দীর্ঘদিনের জন্য চালু থাকতে হবে। এছাড়া প্রাইভেট এবং তিনচাকার ট্যাক্সি একজন করে যাত্রী বহন করবে। তবে পরিবারের সদস্য হলে দুইজন বহন করতে পারে। অবশ্য রিকশা, মোটরসাইকেল এবং বাই-সাইকেলে কোন সমস্যা নেই। ৪. খাবারের দোকান, মুদি দোকান, মার্কেট এবং শপিং-মল দিনের লম্বা সময়ের জন্য খোলা রাখা। স্বল্প সময়ের জন্য খোলা রাখলে মানুষের চাপ বাড়ে এবং সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি হয়। বেশি সময় যাবত খোলা থাকলে মানুষের ভিড় কম হবে। কাঁচা বাজারগুলো উন্মুক্ত জায়গায় পরিচালনা করতে হবে। রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়া যাবে না। হোম ডেলিভারি সার্ভিসকে উৎসাহ দিতে হবে। ৫. জনসমাবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মসজিদ, মন্দির এবং চার্চে যাতে ভিড় না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রার্থনায় সীমিত সংখ্যক মানুষ যেতে পারবে। এছাড়া রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ বন্ধ রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। যদিও করাও হয় তাতে ১০জনের বেশি মানুষ থাকতে পারবে না। ৬. যারা দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে জীবিকা নির্বাহ করে তাদের কাজ চালিয়ে নেয়া যাবে। নিয়োগকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের শারীরিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করবে। কারখানায় স্বাস্থ্য বিধি মানতে হবে।,বলছেন বিশেষজ্ঞরা। ৭. কলকারখানার প্রবেশ মুখে শ্রমিকদের জন্য স্যানিটাইজেশন ব্যবস্থা রাখতে রাখবে, যাতে করে তারা জীবাণুমুক্ত হয়ে কারখানায় প্রবেশ করতে পারে। কারখানার ভেতরে মাস্ক পরে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে হবে। ৮. যতদিন পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতি না হয় ততদিন পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমকে উৎসাহ দিতে হবে। ৯. বিনোদন এবং পর্যটন কেন্দ্রগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হবে। পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত পর্যটন কেন্দ্র খোলা যাবে না। টেস্ট করার সুবিধা আরো বাড়ানোর তাগিদ বিশেষজ্ঞদের। ১০. আইসোলেশন, কন্টাক্ট ট্রেসিং এবং কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে।এছাড়া ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলমান রাখতে হবে। সংক্রমণ রোধ করার জন্য এটা ভীষণ প্রয়োজন। বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের ক্ষেত্রে কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে যারা আসবেন তাদের দ্রুত খুঁজে বের করে আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে। টেস্ট করার সুবিধা বাড়াতে হবে। টেস্টিং সেন্টারগুলোতে যাতে ভিড় না হয় সেজন্য সেন্টারের সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে। জাতীয় পরামর্শক কমিটি যেসব সুপারিশ করেছে সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য জনগণকে সম্পৃক্ত করা এবং মনিটরিং জোরদার করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। অধ্যাপক শহীদুল্লাহ বলেন,এসব পদক্ষেপ না নিয়ে একসাথে সবকিছু খুলে দিলে আবারো সংক্রমণ বাড়তে পারে। তিনি সতর্ক করে দেন যে, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা অব্যাহত না রাখলে করোনা��াইরাসের সংক্রমণ লাগামছাড়া হয়ে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। আরও পড়তে পারেন: করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে এখনো পর্যন্ত লকডাউন কিংবা কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করার পদ্ধতিকে সবচেয়ে কার্যকর মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। +text: বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, সংখ্যালঘুরা শান্তিতে আছে সোমবার ভারতের পার্লামেন্টে দাবি করা হয় যে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন না-থামাটাই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আনার অন্যতম কারণ। এর প্রতিক্রিয়ায় বিবিসিকে মিস্টার মোমেন বলেন, "আমরা বলতেই পারি যে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অবস্থা এখন খুব ভাল। আগে যারা বিদেশে চলে গিয়েছিলেন, তারাও এখন ফিরে আসছেন।" ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যদি সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বক্তব্য দিয়ে থাকেন তাহলে তা ঠিক না বলেও মনে করেন মিস্টার মোমেন। বিল সম্পর্কে মিস্টার মোমেন বলেন, "ভারতেরা কী করলেন সেটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, সেটা তারা তারা জানেন। তবে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা খুব শান্তি এবং সম্প্রীতিতে আছেন।" সোমবার লোকসভায় এ বিল পেশ করতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলাদেশ-সহ তিনটি প্রতিবেশী দেশের সংবিধানকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, এই দেশগুলোর রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বলেই সেখানে অন্য ধর্মের মানুষরা নিপীড়িত হচ্ছেন। বিলটি লোকসভায় পাশ হয়ে গেছে সোমবারই। মঙ্গলবার এটি রাজ্যসভায় উঠবে। আরো পড়ুন: নাগরিকত্ব বিলে সায় ভারতের মন্ত্রিসভার, কী আছে এতে আবারও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আনছে বিজেপি বাবরি মসজিদ ও কাশ্মীরের পর মোদির টার্গেট এখন কী ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মি. শাহ লোকসভায় বলেন, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার লক্ষ্যেই বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিলটি আনা হয়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম হওয়ার কারণে সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের অভিযোগ ঠিক নয়। এখানে সব ধর্মের মানুষেরাই তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বিনা বাধায় উদযাপন করে থাকে বলেও জানান তিনি। মিস্টার মোমেন বলেন, "এদেশের নিয়ম হচ্ছে, ধর্ম নিজের নিজের, কিন্তু উৎসব সকলের। আমরা এই নীতিতেই বিশ্বাস করি।" "আমাদের দেশে নির্যাতনের কোন দৃষ্টান্ত নেই," তিনি বলেন। বরং ভারতের সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার হয় বলে বিভিন্ন গণম��ধ্যমে জানা যায় বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এদিকে, কূটনৈতিকভাবে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন 'শ্রেষ্ঠ সময়' বা 'সোনালি অধ্যায়ে'র মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দুই দেশের নেতারা প্রায়ই দাবি করে থাকেন। অমিত শাহের এমন বক্তব্যের পর বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে কোন ধরণের প্রভাব পড়বে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তর মিস্টার মোমেন বলেন, তিনি আশা করেন যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে। এই সম্পর্ক নষ্ট করতে ভারতের পক্ষ থেকে কোন ধরণের পদক্ষেপ নেয়া হবে না বলেও আশা প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মিস্টার মোমেন বলেন, "বন্ধুপ্রতীম ভারত এমন কিছু করবে না, যা উভয় দেশের জনগণের দুশ্চিন্তার কারণ হয় কিংবা আতঙ্কের সৃষ্টি করে"। তবে অমিত শাহের বক্তব্যের প্রতিবাদে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হবে কিনা এ বিষয়ে তিনি বলেন, কী সব কারণে অমিত শাহ এগুলো বলেছেন তা উনাকেই জিজ্ঞাসা করতে হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "আমি এখনো বিলটি দেখিনি, দেখতে হবে"। আরো পড়ুন: রোহিঙ্গা গণহত্যার প্রমাণ নিয়ে দ্য হেগে বাংলাদেশ দল ইউটিউবে খেলনার ভিডিও দেখার সুফল ও কুফল ইলিয়াস কাঞ্চনকে নিয়ে মন্তব্য: শাজাহান খান যা বলছেন বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে না। বরং তারা শান্তি এবং সম্প্রীতির সাথে বসবাস করছেন। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এমনটা বলেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। +text: ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে হাজারো মানুষের ভিড় সকাল থেকে এই লাইনগুলোতে দাঁড়িয়ে ছিলেন হাজার খানেক মানুষ। যাদের প্রায় প্রত্যেকে হয় অনেক রাতে অথবা সেহরির পর এসে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। সকাল সাড়ে ১১টার সময়ও তারা কাউন্টার থেকে বহুদূরে অবস্থান করছিলেন। তাদের অভিযোগ মোবাইল অ্যাপসে ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন প্রায় সব কয়জন। অ্যাপসের কার্যকারিতা বা সাফল্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছিলেন কয়েকজন। শিক্ষার্থী তরী বলছেন, "আমি অ্যাপস ডাউনলোড করে রেখেছি, কিন্তু সকাল থেকে কেবল বাফারিংই হচ্ছে। আমি ঢুকতেই পারিনি।" বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: ভারতের ভোটের ফল জানতে দেরী হতে পারে কেন? পাকিস্তানে শত শত শিশু কেন এইচআইভিতে আক্রান্ত? যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধে লাভ ভিয়েতনামের? ডিজিটাল যুগে প্রথম দেখায় প্রেম যেভাবে ঘটে মায়মুনা নামে একজন যাত্রী যিনি রাজশাহীর টিকেট কিনতে এসেছেন তিনি বলছিলেন, "এ বছর যখন অর্ধেক টিকেট অ্যাপসের মাধ্যমে দেয়া হবে বলেছে, তখন আমরা অনেক আশা পেয়েছিলাম। কিন্তু গতকাল থেকে এখনো পর্যন্ত আমি অ্যাপসে ঢুকতেই পারি নাই। শেষে উপায় না দেখে এখানে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি।" দিনাজপুরের টিকেট কিনতে আসা সেলিনা বলছিলেন, "আমি এখন যে জায়গায় আছি সেখান থেকে কাউন্টার পর্যন্ত পৌছাতে আরো মিনিমাম দুই ঘন্টা লাগবে। ইতিমধ্যে এসি টিকেট শেষ বলে শুনেছি, আমি যেতে যেতে শোভন চেয়ার ও থাকবে কিনা, বা আমি আদৌ টিকেট পাবো কিনা জানি না।" রাবেয়া মুনা নামে একজন যাত্রী বলেছেন, "আমি গতকাল থেকে চেষ্টা করছি, আমাকে বারবার দেখাচ্ছে 'লগইন ফেইলড', দুই একবার দেখিয়েছে 'টাইমড আউট'। আর বেশির ভাগ সময় এটা কেবল বাফারিং মানে খালি ঘুরতেছে, আমি আর অ্যাকসেস করতে পারছি না।" এই অভিযোগ লাইনে দাঁড়ানো প্রায় সবার। ঈদ সামনে রেখে আজ থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ে আগাম টিকেট বিক্রি শুরু করেছে। আগামী ৩১ মের টিকেট বিক্রি হচ্ছে আজ। এবারই প্রথম কমলাপুর স্টেশনের বাইরে বিমানবন্দর, বনানী, তেজগাঁও স্টেশন এবং ফুলবাড়িয়া থেকে টিকেট বিক্রির ব্যবস্থা করেছে রেলওয়ে। অ্যাপে টিকেট কিনতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন যাত্রীরা যাত্রীদের অভিযোগ নিয়ে কী বলছে রেলওয়ে বাংলাদেশে রাজধানী ঢাকা শহর ছেড়ে ঈদে বাড়ি ফেরার জন্য প্রতিবছরই মানুষ যাত্রাপথে নানা ঝামেলার মুখে পড়েন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ শোনা যায় রেলের টিকেট পাওয়া নিয়ে। বাংলাদেশ রেলওয়ের একজন পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, যাত্রীদের হয়রানি ঠেকানোর জন্যই মার্চের ২৮ তারিখে 'রেল সেবা' নামে মোবাইল অ্যাপস চালু করা হয়েছে। "আমরা অনেক সময়ই অভিযোগ শুনি, ঘণ্টার পর ঘণ্টা, কখনো একদিনের বেশি সময় লাইনে দাড়িয়ে মানুষ রেলের আগাম টিকেট কাটেন। আবার প্রায়শই কালো বাজারিদের হাতে টিকেট চলে যায়, এবং অনেক বেশি দামে তাদের কাছ থেকে টিকেট কিনতে হয় এমন অভিযোগও শোনা যায়। এসব সমস্যা দূর করতে বাংলাদেশ রেলওয়ে এ বছর ঈদের আগাম টিকেটের অর্ধেক মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।" তবে, অ্যাপসের মাধ্যমে টিকেট কিনতে গিয়ে যে ভোগান্তির অভিযোগ সে সম্পর্কে মিঃ রহমান জানিয়েছেন, একসঙ্গে অনেক মানুষ চে���্টা করার কারণে এই সমস্যা হতে পারে। "আমাদের অ্যাপসটা অ্যান্ড্রয়েড বেসড, বাংলাদেশে প্রায় পাঁচ লাখ অ্যান্ড্রয়েড ফোন আছে। দেখা যায় ঈদের টিকেটের জন্য আগাম টিকেট যখন দেয়া শুরু হয়, তখন একসঙ্গে অনেক মানুষ চেষ্টা করতে থাকে। কিন্তু ডাটা ট্রাফিকের তো একটা লিমিট থাকে, ফলে এই অসুবিধাটা হয়"। "আমার সার্ভারের সক্ষমতা ততটা নয়। ধরুন ঢাকা থেকে ১৪ হাজারের কিছু বেশি টিকেট বিক্রি হবে, এর বিপরীতে টিকেটের জন্য ট্রাই করবেন দুই থেকে আড়াই লক্ষ মানুষ। ফলে সার্ভারের গতি কমে যাবে বা জ্যাম হয়ে যেতে পারে।" তবে, দুপুর একটা নাগাদ অ্যাপসের মাধ্যমে প্রায় চার হাজার টিকেট বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে। এছাড়া আগাম টিকেট বিক্রির সময়সীমার মধ্যে অনলাইনে অবিক্রীত টিকিট ২৭শে মে কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছেন মিঃ রহমান। রেলওয়ে জানিয়েছে ঈদের জন্য ঢাকা থেকে ৩৩টি আন্তঃনগর এবং চারটা বিশেষ ট্রেনসহ ৩৭টি ট্রেনের প্রায় সাড়ে ২৮ হাজার টিকেট বিক্রি হবে। এর অর্ধেক মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে। এদিকে, রেলওয়ের অনলাইন টিকেট বিক্রি এবং মোবাইল অ্যাপসের সেবা দাতা প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম সিএনএস বিডি বিষয়টি নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে সাত নম্বর কাউন্টার থেকে ১৮ নম্বর কাউন্টার পর্যন্ত ঈদের আগাম টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। মূলত যমুনা নদী পার হয়ে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যের জন্য টিকেট দেয়া হচ্ছে এখান থেকে। +text: আদালতের সামনে মৃত দুই নবযাতককে নিয়ে বাবা হাজির হয়েছেন বিচার চাইতে। মৃত যমজ সন্তানের বাবা আবুল কালাম আজাদ সুপ্রিম কোর্টের এমএলএসএস বা অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করেন। তার অভিযোগ ঢাকার তিনটি হাসপাতালে ওই নবজাতকদের নিয়ে ঘুরলেও কোথাও চিকিৎসা পাওয়া যায়নি। এরপর দুটি শিশুর মৃত্যু হলে তিনি ন্যায়বিচার চাইতে লাশ নিয়েই সোজা হাইকোর্টে গিয়ে হাজির হন। ওই শিশুদের কেন হাসপাতালে ভর্তি করা হল না জানতে চেয়ে সোমবার অভিযুক্ত তিনটি হাসপাতালের পরিচালককে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই নির্দেশ দেন। সেই সাথে চিকিৎসা দেয়ার ক্ষেত্রে কেন "অবহেলা করা" হয়েছে এবং হাসপাতালগুলো "কেন নিষ্ক্রিয়তা দেখিয়েছে" তার কারণ জানতে চেয়ে আদালত আদেশ দিয়েছে। যমজ শিশু। (ফাইল ছবি) ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, রোববার সকালে তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী অসুস্থবোধ করলে তিনি সিএনজি অটোরিকশায় করে তাকে মুগদা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নিয়ে যান। তিনি জানান, হাসপাতালে নেয়ার পথে সিএনজিতেই যমজ সন্তান প্রসব করেন তার স্ত্রী। "পরে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে স্ত্রীকে ভর্তি করতে পারলেও নবজাতকদের জরুরি চিকিৎসা দেয়ার মতো সুবিধা হাসপাতালটিতে নেই বলে জানানো হয়।" তিনি বলেন, "শিশু দুটি অপরিণত হওয়ায় তাদের জরুরি আইসিইউ সেবার প্রয়োজন ছিল। সেই চিকিৎসা সুবিধা না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নবজাতকদের শ্যামলীর ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে।" ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, পরে মি. আজাদ শিশু দুটিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে শিশু হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে জানানো হয় শিশুদের বেডে ভর্তি করতে গেলে প্রতি শিশুর জন্য পাঁচ হাজার টাকা, মোট ১০ হাজার টাকা খরচ পড়বে। "এতো টাকা না থাকায় শিশু দুটিকে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেও তাদেরকে কোন চিকিৎসা দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।" আরও পড়তে পারেন: দাফনের আগে নড়ে উঠলো নবজাতক, এখন এনআইসিইউতে কন্যা শিশুকে যেভাবে আত্মবিশ্বাসী হতে শেখাবেন অনাগত সন্তান ছেলে কিনা দেখতে 'অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর পেট কাটল' স্বামী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক জানান, দ্রুত চিকিৎসা পেতে হাইকোর্টের এক বিচারপতির সাথে কথা বলে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। "কিন্তু তার ব্যক্তিগত সহকারী জানান যে পরিচালক মিটিংয়ে আছেন। দীর্ঘসময় পর জানানো হয় পরিচালক বাড়ি চলে গেছেন।" তিনি বলেন, এরপর একজন চিকিৎসক অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে শিশু দুটিকে পরীক্ষা করে জানান, তারা আর বেঁচে নেই। এরপর শিশু দুটির লাশ নিয়ে উচ্চ আদালতে বিচার চাইতে আসেন তিনি। পুরো বিষয় শুনে হাইকোর্ট, অভিযুক্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা শিশু হাসপাতাল এবং ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল মুগদার পরিচালককে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছে। বাংলাদেশের ঢাকায় উচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে দুই মৃত নবজাতককে বুকে জড়িয়ে হাজির হয়েছেন এক বাবা বিচার চাইতে। +text: নন্দা দেবী পর্বতের শিখরে উঠতে গিয়ে নিখোঁজ আট পর্বতারোহী এই দলে রয়েছে ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের নাগরিক। তারা হিমালয়ের ৭৮১৬ মিটার উঁচু এই পর্বতটির পূর্ব দিক থেকে গত ১৩ই মে উঠতে শুরু করেন। কিন্তু যখন তারা নির্ধারিত সময়েও বেস ক্যাম্পে ফেরত আসেননি, তখন অনুসন্ধান ও উদ্ধার দলগুলোকে তাদের খোঁজে পাঠানো হয়। আরো পড়ুন: সাতজন অন্ধ ব্যক্তির পর্বত জয়ের গল্প হিমালয়ের চূড়ায় পর্বতারোহীর এত ভিড় যে কারণে এভারেস্টে যে চারটি কারণে এতো আরোহীর মৃত্যু পবর্তারোহীদের জন্য কতটা প্রাণঘাতী মাউন্ট এভারেস্ট? তবে স্থানীয় একজন কর্মকর্তা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ভারী বৃষ্টি আর তুষারপাতের কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। ''পর্বতারোহীরা বেস ক্যাম্পে ফিরে না আসায় তাদের খুঁজে বের করতে আমরা সর্বশক্তি নিয়োগ করেছি, কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে অভিযানে সমস্যা হচ্ছে,'' বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলছেন পিথোরাগড় জেলার ম্যাজিস্ট্রেট বিজয় কুমার জোগদান্ডে। রবিবার সকাল থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার উদ্ধার অভিযানে অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। আটজনের এই দলে রয়েছেন চারজন ব্রিটিশ, দুইজন আমেরিকান, একজন অস্ট্রেলিয়ান আর একজন ভারতীয় নাগরিক। দলটিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ব্রিটিশ পর্বতারোহী মার্টিন মোরান, যার স্কটল্যান্ডের কোম্পানি ভারতীয় হিমালয় অঞ্চলে অনেক পর্বত অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযানের একদিন আগে মার্টিন মোরান তার ফেসবুক পাতায় যে ছবি পোস্ট করেন, সেখানে দেখা যায় যে, দলটি ভাওয়ালির নেম খারোলি বাবা মন্দিরের চূড়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করছে। ২২শে মে তারিখে দ্বিতীয় বেস ক্যাম্প, যার উচ্চতা ৪৮৭০ মিটার, সেখান থেকে দেয়া আরেকটি পোস্ট থেকে আভাস পাওয়া যায় যে, দলটি আগে কেউ না ওঠা একটি পর্বতের শিখর জয় করার চেষ্টা করতে যাচ্ছেন। তবে দলটির কখন বেস ক্যাম্পে ফিরে আসার কথা ছিল, তা নিয়ে নানা রকম তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তবে স্থানীয় গণমাধ্যমে তথ্য অনুযায়ী, নন্দা দেবীর বেস ক্যাম্পে তাদের ৩১শে মে ফিরে আসার কথা চিল। আর কাছের গ্রাম মুসসিয়ারিতে ফিরে আসার কথা ছিল ১লা জুন। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ দপ্তরের একজন মুখপাত্র বলেছেন , ''ভারতীয় হিমালয় পর্বতে কয়েকজন ব্রিটিশ অভিযাত্রীর নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার খবর পাওয়ার পর আমরা ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। যেকোনো ব্রিটিশ নাগরিকের দরকারে আমরা সাধ্যমত সবরকম সহায়তা করবো।'' বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা ঘরে তুললো লিভারপুল দক্ষিণ আফ্রিকার যে দুর্বলতা বাংলাদেশের বড় সুযোগ কুঁড়েঘর থেকে মন্ত্রিসভায়ঃ প্রতাপ সারাঙ্গি আসলে কে? একা হাতে যারা সন্তান বড় করেন ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বত নন্দা দেবীর শিখরে উঠতে গিয়ে আটজন পর্বতারোহীর একটি দল নিখোঁজ হয়ে গেছে। +text: জাপান সরকার চায় কর্মচারীরা প্রতি মাসের প্রথম সোমবারের সকালটুকু নিজেদের মতো করে উপভোগ করুন। 'শাইনিং মানডে' নামের এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, জাপানী অর্থ মন্ত্রণালয় নতুন এক প্রস্তাব আনতে যাচ্ছে যেখানে ওভারটাইম কমানো এবং কাজ ও অবসরের মধ্যে ভারসাম্য আনার কথা বলা হচ্ছে। গত বছর সরকার 'প্রিমিয়াম ফ্রাইডে' নামে আরেকটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে যেখানে শুক্রবার বিকেল তিনটার মধ্যে কর্মীদের ছুটি দেয়া হচ্ছে। এটা করা হয়েছে যাতে ঐ সময়ে তারা বেড়াতে যেতে পারেন কিংবা কেনাকাটা করতে পারেন। মন্ত্রণালয় বলছে, এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের মধ্যে তারা একটি জরিপ চালিয়েছে যেখানে ৩০% কর্মীকে সোমবার সকালে ছুটি দেয়া হয়েছিল। ঐ জরিপে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়ার পর সরকার জাপানের কর্পোরেট জগতের জন্য একটি প্রস্তাব তৈরি করছে। তবে এই প্রস্তাব কোম্পানিগুলোর জন্য বাধ্যতামূলক নয়। জাপানে কর্ম-সপ্তাহের মেয়াদ কমানোর প্রচেষ্টার পেছনে রয়েছে জনগণের স্বাস্থ্য নিয়ে চরম উদ্বেগ। ২০% জাপানী কর্মচারী মাসে ৮০ ঘণ্টার বেশি ওভারটাইম করেন। আরো পড়তে পারেন: 'চামড়ার দাম কমলে কওমি মাদ্রাসার আয় কমে যাবে' বাংলাদেশে অর্গানিক গরুর চাহিদা কেন বাড়ছে? 'মি-টু' নেত্রীর বিরুদ্ধে যৌন অসদাচরণের অভিযোগ সে দেশে ২০১৬ সালের ১০,০০০ কর্মচারীর ওপর চালানো একটি জরিপে দেখা গেছে ২০% কর্মচারী প্রতিমাসে ৮০ ঘণ্টা ওভারটাইম করেছেন। তবে ১৯৬০-এর দশক থেকেই জানা যায় যে দীর্ঘ সময় কাজের ফলে হৃদযন্ত্র এবং মস্তিষ্কে নানা অসুখ হয়। জাপানী ভাষায় এ ধরনের মৃত্যুর নাম 'কারোশি', যার অর্থ অতিরিক্ত পরিশ্রমে মৃত্যু। সরকারিভাবেই কারোশিতে আক্রান্ত হয়ে ২০১৭ সালে ২৩৬ জনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করা হয়েছে। এর ��াইরে 'কারোজিসাৎসু' অর্থাৎ মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে কর্মীরা আত্মহত্যা করছেন। ঐ একই বছর এধরনের ২৩৬টি আত্মহত্যার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানী সাওয়াকো শিরাহাসে বলছেন, এটা জাপানের দীর্ঘ দিনেরএক সমস্যা। কর্পোরেট সংস্কৃতি এবং কাজের ধারার সাথে এসব সমস্যার গভীর যোগাযোগ রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। জাপান সরকার চাইছে শ্রমিক-কর্মচারীরা যেন মাসের প্রথম সোমবার সকালে ছুটি উপভোগ করতে পারেন। +text: সাজিদ জাভিদ ব্রিটেনে অবৈধ অভিবাসী বিতাড়ন সম্পর্কিত সরকারি নীতি নিয়ে কেলেঙ্কারির মুখে রোববার রাতে পদত্যাগ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাম্বার রাড। পরদিনই তার জায়গায় সাজিদ জাভিদের নিয়োগ বিস্ময় তৈরি করেছে। শুধু প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূতই নয়, এই প্রথম কোনো মুসলিম ব্রিটেনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর একটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন। প্রথম প্রজন্মের অভিবাসীর সন্তান হয়ে সাজিদ জাভিদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হবে অভিবাসন নিয়ে ব্রিটেনের জনগণের উদ্বেগ সামলানো। তথাকথিত 'উইন্ডরাশ' কেলেঙ্কারি নিয়ে ব্রিটেনের বর্তমান কনজারভেটিভ সরকার সম্প্রতি প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়েছে। প্রধানত ক্যারিবিয় দ্বীপপুঞ্জ থেকে ৫০ এবং ৬০ দশকে আসা অভিবাসী, যাদেরকে উইন্ডরাশ প্রজন্ম বলে অভিহিত করা হয় - তাদের অনেককে হঠাৎ করে অবৈধ অভিবাসী হিসাবে ঘোষণার কথা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর সরকারের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় ওঠে। পত্রপত্রিকায় প্রতিদিন খবর বেরুতে থাকে - এমনকী ব্রিটেনে জন্ম নিয়েও উইন্ডরাশ প্রজন্মের সন্তানদের অনেককেই হঠাৎ করে অবৈধ অভিবাসী হিসাবে ঘোষণা করায় অনেকে চাকরি হারান, চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। অনেককে তাদের পিতৃপুরুষের দেশে ফিরেও যেতে হয়েছে। বিভিন্ন অনুসন্ধানে ফাঁস হয়ে পড়েছে, অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর সংখ্যা নিয়ে সরকারের গোপন টার্গেটের অন্যায় বলি হয়েছেন বহু পুরনো অনেক ক্যারিবীয় অভিবাসী এবং তাদের সন্তানরা। এ নিয়ে সরকারের ভেতরেও ক্ষোভ তৈরি হয়। অভিবাসী বহিষ্কার সম্পর্কিত কেলেঙ্কারিতে রোববার পদত্যাগ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাম্বার রাড সাজিদ জাভিদ, যিনি গতকাল পর্যন্ত কম্যুনিটিজ এবং আবাসন মন্ত্রী ছিলেন, তিনিও অভিবাসন সম্পর্কিত ঐ কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। লন্ডনের দৈনিক টেলিগ্রাফকে তিনি বলেন, "তিনি নিজেও উইন্ডরাশ প্রজন্মের সন্তান, তার বাবা-মাকেও হয়তো রাতারাতি অবৈধ হয়ে যেতে হতো।" পত্রিকায় সরকারের অভিবাসন নীতির সমালোচনা করলেও তাকেই প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে অভিবাসন কেলেঙ্কারি সামলানোর দায়িত্ব দিলেন। বাংলাদেশে বজ্রপাত কখন কোথায় বেশি হচ্ছে? অজান্তেই এতোদিন ধরে পোকা খেয়ে আসছেন অনেকে ব্রিটেনের নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদের বাবা ১৯৬০ এর দশকে পাকিস্তান থেকে এদেশে এসে প্রথমে কাপড়ের কারখানায় শ্রমিক হন। পরে বাস চালাতেন। +text: রোহিঙ্গা গণহত্যার জবাব দিতে হেগের পথে অং সান সু চি ১১ই নভেম্বর পশ্চিম আফ্রিকার ছোটো একটি দেশ গাম্বিয়ার করা ঐ মামলার বিপক্ষে ব্যক্তিগতভাবে আদালতে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকে মিয়ানমারে সমর্থন আর অভিনন্দনের জোয়ারে ভাসছেন বিতর্কিত এই নোবেল জয়ী রাজনীতিক। ইসলামি ঐক্য সংস্থার (ওআইসি) সমর্থনে গাম্বিয়ার আনা এই মামলাটি রোহিঙ্গা হত্যা-নির্যাতন নিয়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে প্রথম কোনো মামলা। মঙ্গলবার থেকে চারদিন ধরে দি হেগের আদালতে এই মামলার শুনানি চলবে। মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মিস সু চিকে সাহায্য করতে একদল 'খ্যাতনামা আন্তর্জাতিক' আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে। এই আইনজীবী কারা- তা অবশ্য খোলাসা করা হয়নি। নেপিড'তে মিস সু চিকে অভিনন্দন জানাতে সমাবেশ, ডিসেম্বর ৭, ২০১৯ রোহিঙ্গা বিষয়ে তদন্তের অনুমতি দিলো আইসিসি রোহিঙ্গা: মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার অভিযোগ কেন? মিয়ানমারে সমর্থনের জোয়ার মিয়ানমারে হাজার হাজার মানুষ গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন শহরে গণহত্যার মামলায় অং সান সু চির পক্ষে সমাবেশ করছে। বিভিন্ন বার্তা সংস্থার খবরে বলা হচ্ছে আজও (রোববার) মধ্যাঞ্চলীয় মনিওয়া শহরে এক সমাবেশে কমপক্ষে তিন হাজার লোক জড় হয়। বিবিসির বার্মিজ বিভাগের সাংবাদিকরা বলছেন, দি হেগে রওয়ানা হওয়ার আগের দিন গতকাল (শনিবার) রাজধানী নেপিড'তে হাজার হাজার লোক অং সান সুচির সমর্থনে সমাবেশ করেছে। আন্তর্জাতিক আদালতে তার সাফল্যের জন্য দেশের বিভিন্ন বৌদ্ধ মন্দির ছাড়াও খ্রিষ্টান গির্জাতেও বিশেষ প্রার্থনা হচ্ছে। বিভিন্ন শহরে রাস্তার পাশে বড় বড় বিলবোর্ড টাঙ্গিয়ে মিস সুচির সাফল্য কামনা করা হচ্ছে। পূর্বাঞ্চলীয় একটি শহরে বিশাল এক বিলবোর্ড�� আন্তর্জাতিক আদালত ভবনের ছবির ওপর অং সাং সুচির ছবি ছাপিয়ে লেখা হয়েছে - 'আমরা তোমার সাথে রয়েছি।' বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, মিস সু চির সমর্থনে পাঁচ দিনের জন্য দি হেগে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে মিয়ানমারের একটি ট্রাভেল এজেন্সি। দুই হাজার ডলারের এই প্যাকেজে অনেক সাড়া পেয়েছে এই কোম্পানি, যদিও এই টাকার বার্মিজদের কাছে অনেক টাকা। এছাড়া, ইউরোপের বিভিন্ন শহর থেকে অনেক প্রবাসী বার্মিজও দি হেগে হাজির হচ্ছেন বলে জানিয়েছে বিবিসির বার্মিজ বিভাগ। আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা হওয়ার পর থেকেই প্রতিদিনই মিয়ানমার জুড়ে মিস সু চির সমর্থনে সমাবেশ হচ্ছে কেন নিজে আদালতে যাচ্ছেন সুচি মন্ত্রী বা কর্মকর্তাদের না পাঠিয়ে নিজে কেন আন্তর্জাতিক আদালতের মুখোমুখি হচ্ছেন অং সান সু চি? বার্মিজ দৈনিক ইরাবতি তাদের সাম্প্রতিক এক সম্পাদকীয়তে লিখেছে, "আইন নিয়ে তার কোনো বিশেষ অভিজ্ঞতা না স্বত্বেও মিস সু চি নিজে আদালতে দাঁড়ানোর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এবং তার এই সিদ্ধান্ত সুপরিকল্পিত...তিনি জানেন 'বামার' (বার্মার সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিগোষ্ঠী ) বৌদ্ধরা তার পাশে রয়েছে।" আন্তর্জাতিক সাময়িকী দি ডিপ্লোম্যাট বলছে, মিস সু চির এই সিদ্ধান্তের পেছনে ক্ষমতাসীন দল এনএলডির জনসমর্থন বাড়ানোর উদ্দেশ্য থাকার অসম্ভব কিছু নয়। "আগামী বছর মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচন..সংখ্যাগরিষ্ঠ বামার জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে তার এবং তার দলের জনপ্রিয়তা এখনও প্রচুর, কিন্তু অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে তিনি দ্রুত সমর্থন হারাচ্ছেন।" কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী - টাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি, আরাকান আর্মি এবং মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক আ্যালায়ান্স আর্মি - গাম্বিয়ার আনা এই মামলার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তারা বলছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্যপ্রমাণ জোগাড়ে তারা সাহায্য করবে। দি হেগে রওয়ানা হওয়ার আগের দিন (শনিবার, ডিসেম্বর ৭, ২০১৯) নেপিডতে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে অং সান সু চির বৈঠক মিয়ানমারে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী তিন বছর আগে, রাখাইন প্রদেশের লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর চরম নির্যাতন চালিয়ে তাদের দেশ থেকে বিতাড়িত করার ঘটনা নিয়ে বিশ্বে অং সান সুচির ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে কলঙ্কিত হয়েছে। জাতিসংঘ ঐ ঘটনাকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসাব�� আখ্যা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে চীন, রাশিয়া, জাপান, ভারতসহ কয়েকটি প্রভাবশালী দেশ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এইসব অভিযোগের ব্যাপারে চুপ। আন্তর্জাতিক আদালতে শুনানি শুরুর ঠিক আগেই চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই মিয়ানমার সফরে যান। গতকাল (শনিবার) নেপিড'তে তিনি অং সান সু চির সাথে একান্তে বৈঠক করেছেন। আন্তর্জাতিক আদালতে আনা রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলার শুনানিতে মিয়ানমারের পক্ষে নিজেই দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে রোববার দি হেগের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন অং সান সু চি। +text: হলি আর্টিজানে হামলার পরবর্তী আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর অভিযানে এ পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত সন্দেহভাজন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। গুলশানে জঙ্গি হামলার পরে জঙ্গি দমনে সরকারের কঠোর অবস্থান দেখা যায়। হলি আর্টিজানে ওই হামলার পরবর্তী আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর অভিযানে এ পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত সন্দেহভাজন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, "এর মধ্য দিয়ে একটি বার্তা কিন্তু জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যাচ্ছে সারা দেশে। সেটি হলো যে- এ ধরনের আস্তানা গেড়ে, অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে, বোমা নিয়ে সেখানে অবস্থান নিতে পারবে কিন্তু তাদের পরিত্রান নেই।" মি. চৌধুরী মনে করেন, "রাজনৈতিকভাবে জঙ্গিবাদের প্রশ্নে ঐক্যমত না থাকলেও দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে জঙ্গিবাদের প্রশ্নে ঐক্যমত আছে।" সরকারের নীতি নির্ধারকরা মনে করে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকার যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে তাতে জনগণ সমর্থন দিচ্ছে এবং আশ্বস্ত হচ্ছে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মামুন বলেন, "বিরোধীদল কিছুদিন আগে বললো যে যারা গুম হয়েছে আগে তাদেরকে জঙ্গি হিসেবে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। এটাওতো হতে পারে।" ফারিহা নামে আরেকজন শিক্ষার্থী বলছিলেন, "আমার সাথে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা যে কেউ জঙ্গি হতে পারে আমি জানিনা। এটা একটা ভয় কাজ করতেছে।" আরো পড়ুন: মৌলভীবাজারে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে ৭/৮ জঙ্গি নিহত ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন গ্রিসে গুলিবিদ্ধ সেই বাংলাদেশিরা পাকিস্তানকে পতাকা দেখাতে গিয়ে বিপাকে ভারত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী অন্য আরেক শিক্ষার্থী বলছিলেন, সরকারের বক্তব্য আসলে পরিষ্কার যে জঙ্গিবাদ���র সঙ্গে কোনো আপস নাই। তবে তাঁর ভাষায় সরাকরের পদক্ষেপ যথাসময়ে হয়নি বলেই মনে হয়- "প্রথমে যখন ব্লগার হত্যা শুরু হয়েছিল একটা গ্রুপ কিন্তু এটাকে নাস্তিক নিধন হিসেবে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করেছিল। এখন আমরা সেটার ফল পাচ্ছি। তখন আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেই নাই সে কারণে এখন পানি এতদূর পর্যন্ত গড়িয়েছে"। জঙ্গি ইস্যুটি এখন এতটাই আলোচিত যে শহর এবং গ্রামের সাধারণ মানুষও এটি নিয়ে সচেতন এবং হাটে বাজারে বৈঠক, মসজিদে আলোচনায় প্রাধান্য থাকে জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গ। সাভারের দত্তপাড়ায় মসজিদে যোহরের নামাজের পর গ্রামের কয়েকজন মুসল্লির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা হয়। সেখানে জাফর আলী বলেন, "যেভাবে নির্মুল করতেছে এই পদক্ষেপ আমাদের অনেকের কাছেই ভাল এবং মানুষে ভালই মনে করেতেছে যে দেশে জঙ্গিবাদ যাতে না থাকে"। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক শামীম রেজা জঙ্গিবাদ নিয়ে তারা সরকার এবং বিরোধীদলের নেতাদের বক্তব্য বিবৃতির সমালোচনা করলেন। ষাটোর্ধ্ব তারা মিয়া বলেন, "জঙ্গিবাদ এক জিনিস রাজনীতি আরেক জিনিস। জঙ্গিবাদের নিয়ে রাজনীতি করা যাবে না। রাজনীতি আছে থাকবে আমাদের দেশে।" জঙ্গি দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানা অভিযান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দেখা যায় অনেকে বিভিন্ন রকম প্রশ্ন তুলছে এবং তর্ক বিতর্ক করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক শামীম রেজা এ প্রসঙ্গে বলছিলেন, "জঙ্গিবাদের ক্ষেত্রে যেভাবে সরকার তার একটা ডিসকোর্স তৈরি করছে সেভাবে সামগ্রিক জাতীয় ঐক্যমতের কোনো ডিসকোর্স তৈরি হয়নি। "দেখা যায় যে সবসময় বিরোধীদল যে বিবৃতি দিচ্ছে তার সাথে সরকারের বিবৃতি মেলে না। এবং এই না মেলার এই যে অনৈক্যের জায়গাটা তাতে কিন্তু জনগণ আরো শঙ্কিত হয়ে পড়েন।" মি. রেজা মনে করেন, জঙ্গিবাদ দমন একটি ব্যাপকভিত্তিক প্রক্রিয়া একই সঙ্গে একটি আদর্শের বিরুদ্ধে লড়াই। বাংলাদেশে জঙ্গিরা যে দর্শন নিয়ে মাঠে নেমেছে তার প্রতিদর্শন নিয়ে কার্যকর জোরালো প্রচারাভিযানেরও ঘাটতি দেখা যায় বলেও জানাচ্ছেন শামীম রেজা। সাভারের দত্তপাড়ায় মসজিদে যোহরের নামাজের পর গ্রামের কয়েকজন মুসল্লির সঙ্গে। বাংলাদেশে জঙ্গি পরিস্থিতি নিয়েই সর্বত্র আলোচনা সমালোচনা এবং বিশ্লেষণ চলছে। জঙ্গি দমনে সরকারের কার্যক্রম নিয়ে যেমন আলোচনা সমালোচনা রয়েছে তেমনি এ বিষয়ে রাজন���তিক দলগুলোর ভূমিকা নিয়ে আছে তর্ক-বিতর্ক। +text: সমালোচকেরা মনে করেন আইনটি প্রতিক্রিয়াশীল এবং আপত্তিকর ওই ব্যক্তি দেশটিতে 'লাভ-জিহাদ' নামে বিয়ের মাধ্যমে হিন্দু মেয়ে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিতকরণ বন্ধে যে নতুন আইন হয়েছে, তার অধীনে প্রথম গ্রেপ্তারের ঘটনা এটি। সম্প্রতি হিন্দু-মুসলিম বিয়ে বন্ধ করার জন্য দেশটিতে ২৪শে নভেম্বর দশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং জামিন অযোগ্য--এমন বিধান রেখে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার একটি নতুন আইন পাস করে। সমালোচকেরা আইনটিকে ইসলামোফোবিক বলে আখ্যা দিয়েছেন, এর বিরুদ্ধে দেশে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। উত্তর প্রদেশ ছাড়াও আরো চারটি রাজ্যে 'লাভ-জিহাদ' বিরোধী আইনের খসড়া চূড়ান্ত করছে। বুধবার উত্তর প্রদেশের বারিলি জেলার পুলিশ গ্রেপ্তারের বিষয়টি টুইটারে পোস্ট দিয়ে নিশ্চিত করেছে। যে নারীকে ধর্মান্তরিত করা হচ্ছিল, তার বাবা বিবিসি হিন্দিকে বলেছেন, তিনি পুলিশে অভিযোগ করেছেন, কারণ ওই ব্যক্তি তার মেয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করছিল, এবং হুমকি দিচ্ছিল। আইনটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে ভারতে মুসলমান ব্যক্তির সঙ্গে ওই নারীর সম্পর্ক ছিল, কিন্তু বছরের শুরুতে তিনি অন্য একজন পুরুষকে বিয়ে করেন। পুলিশ বিবিসিকে বলেছে, এক বছর আগে ওই নারীর পরিবার ওই মুসলমান ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা করেছিল। কিন্তু পরে ওই নারী ফেরত এসে যখন বলেন যে তাকে অপহরণ করা হয়নি, তখন মামলা বন্ধ করে দেয়া হয়। বুধবার গ্রেপ্তারের পর ওই ব্যক্তিকে ১৪ দিনের জুডিশিয়াল কাস্টডিতে পাঠানো হয়েছে। সাংবাদিকদের কাছে তিনি দাবি করেছেন, তিনি নির্দোষ, এবং 'ওই নারীর সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক নেই'। লাভ-জিহাদ বিরোধী আইনটি কী? 'বলপূর্বক' বা 'জালিয়াতি' করে ধর্মান্তরিত করা বন্ধ করার জন্য ভারতের প্রথম রাজ্য হিসেবে উত্তর প্রদেশ নভেম্বরে এই আইন পাস করে। অর্ডিন্যান্সটিতে বলা হয়েছে, এই ধরনের ধর্মান্তরের প্রমাণ পাওয়া গেলে সেই বিয়ে 'শূন্য' বা বাতিল বলে বিবেচিত হবে। যারা সেই ধর্মান্তর করাবেন, সেই দোষী ব্যক্তিদের আর্থিক জরিমানা ও সর্বোচ্চ দশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডও হবে। আরো পড়তে পারেন: 'লাভ জিহাদ' : যোগীর আনা অর্ডিন্যান্সের তুলনা হিটলারের আইনের সঙ্গে ভারতে 'লাভ জিহাদে'র বিরুদ্ধে আইন তৈরির উদ্যোগ প্রশ্নের মুখে? ভারতে হিন্দু নারীর মুসলিম স্বামীদের হত্যার হুমকি তথ���কথিত 'লাভ জিহাদ' এর বিরুদ্ধে ভারতে আইন করা হচ্ছে অর্ডিন্যান্সটিকে সাধারণভাবে 'লাভ-জিহাদ বিরোধী' আইন বলেই বর্ণনা করা হচ্ছে - যদিও লাভ জিহাদ শব্দ-বন্ধটি অর্ডিন্যান্সের খসড়াতে কোথাও ব্যবহার করা হয়নি। ভারতে মুসলিম যুবকরা যখন কোনও হিন্দু মেয়েকে ভালবেসে বিয়ে করতে যান, সেটাকে বিজেপি ও দেশের বিভিন্ন হিন্দুত্ব-বাদী গোষ্ঠী অনেকদিন ধরেই 'লাভ জিহাদ' বলে বর্ণনা করে আসছে। এই মূহুর্তে মধ্য প্রদেশ, হরিয়ানা, কর্ণাটক এবং আসামও 'লাভ-জিহাদ' ঠেকানোর এই আইন পাসের পরিকল্পনা করছে। এই সব ক'টি রাজ্য পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপি, এবং তাদের বিরুদ্ধে মুসলমান-বিরোধী সেন্টিমেন্ট স্বাভাবিকীকরণের অভিযোগ রয়েছে। সমালোচকেরা মনে করেন আইনটি প্রতিক্রিয়াশীল এবং আপত্তিকর। ভারতের উত্তর প্রদেশে একজন হিন্দু নারীকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করার অভিযোগে পুলিশ একজন মুসলিম পুরুষকে গ্রেপ্তার করেছে। +text: জ্যাকুইন ডেভিস বলছেন, দেহরক্ষী হতে হলে তাকে অনেক কিছু জানতে হবে জ্যাকুইন বলছেন, ''যখন আমি প্রথম এই পেশায় আসি, তখন এটা ছিল পুরোপুরি পুরুষ কেন্দ্রিক একটি জায়গা। তারা সবসময়ে চাইতো আমি যেন শুধু নারী বা শিশুদের বিষয়গুলো দেখভাল করি-যা ছিল খুবই অদ্ভুত। যেন তারা সবাই আমার বাবা।'' ১৯৮০ সালে পুলিশ বিভাগে চাকরিতে ঢোকার কিছুদিন পরেই জ্যাকুইন বেসরকারি নিরাপত্তা খাতে চলে যাবার সিদ্ধান্ত নেন, কারণ এটা তাকে নানা ধরণের কাজের সুযোগ দেবে। পেশার কারণে তিনি বিশ্বের নামীদামী পাঁচ বা ছয় তারকা হোটেলে থেকেছেন। তিনি বলছেন, ''কিন্তু প্রতিদিনই ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা কাজ করার পর সেসব উপভোগের সময় থাকেনা। '' এর বাইরে একজন দেহরক্ষীকে সবচেয়ে বড় মূল্য দিতে হয় তার ব্যক্তিগত জীবনের। ''আপনি হয়তো আট-দশ সপ্তাহ বাড়িতেই যেতে পারবেন না।'' বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: সরকারের হুমকিতে দেশ ছেড়েছি: সুরেন্দ্র সিনহা তিন তালাক শাস্তিযোগ্য অপরাধ: ভারতে নির্বাহী আদেশ রোহিঙ্গা নির্যাতন: প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে আইসিসি জ্যাকুইন ডেভিসের জীবন নিয়ে 'ক্লোজ' নামের একটি চলচ্চিত্র বানাচ্ছে নেটফ্লিক্স যখন আগেভাগে পরিকল্পনা করে ক্লায়েন্টদের জীবনের ঝুঁকি দূর করতে হয়, তখন সেটি সিনেমা বা নাটকের চেয়েও নাটকীয় হয়ে ওঠে। অপহরণের শিকার কয়েকজন তেল কর্মীকে উদ্ধার করতে গিয়ে নজরদারি��� অংশ হিসাবে জ্যাকুইনকে ইরাকের রাস্তায় বোরকা পড়ে ঘুরতে হয়েছে। একটি উদ্ধার অভিযানের কাহিনী ''একবার আমাদের পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ধাওয়া করেছিল এবং আমরা কাশ্মীরে ঢুকে পড়ি। কাশ্মীরের বিদ্রোহীরা পাকিস্তানি সেনাদের দিকে গুলি ছুড়তে শুরু করলে আমরাও তার মধ্যে পড়ে যাই।'' বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের বিজনেস ডেইলির কাছে একটি ঘটনা বর্ণনা করছিলেন জ্যাকুইন। সদ্য বিবাহিত স্বামীর সঙ্গে পাকিস্তানে যাওয়া ২৩ বছর বয়সী একজন ব্রিটিশ নারীকে উদ্ধার করতে নিজের দল নিয়ে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন জ্যাকুইন। ব্রিটেনে থাকা তার মা জানতে পারে, যে পাকিস্তানে তাকে আটকে রাখা হয়েছে। তখন তিনি মেয়েকে উদ্ধারের জন্য জ্যাকুইনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যে ভিলায় তাকে আটকে রাখা হয়েছিল, একরাতে জ্যাকুইন সেখানে প্রবেশ করে তাকে বিছানার সঙ্গে হাতকড়া লাগানো অবস্থায় দেখতে পান। '' সে আমাদের জানায়, সে তিনমাসের অন্তঃসত্ত্বা। তাকে ধর্ষণ করা হচ্ছে, খেতে দেয়া হয়না এবং মারধর করা হচ্ছে। আমি তখন তাকে বললাম, আমি আবার আসবো এবং তোমাকে নিয়ে যাবো।'' কিন্তু হঠাৎ একটি ফোন কলে তারা জানতে পারেন যে, তাদের পরিচয় ফাঁস হয়ে গেছে। ''বেনজির ভুট্টোর জন্য আমি একসময় কাজ করেছি। তিনি আমাকে চিনতে পারেন এবং ধারণা করেন, নিশ্চয়ই আমি কাউকে উদ্ধার করার জন্য এখানে এসেছি।'' এর মানে, তাদের খুব দ্রুত কাজ করতে হবে। বিশ্বে সন্ত্রাসবাদ বেড়ে যাওয়ায় নিরাপত্তা চাহিদা বেড়েছে। টেরেসা মে'র মতো রাজনীতিবিদদের চারপাশে সবসময়েই দেহরক্ষীদের দেখা যায় ''একজন ট্যাক্সি ড্রাইভারকে ঘুষ দিয়ে আমরা বাড়িটির গেট ভেঙ্গে প্রবেশ করি'' তিনি বলছেন। এরপর সেই মেয়েটিকে উদ্ধার করে পাহাড়ি পথ ধরে একটি গাড়িতে করে ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা হন। কিন্তু পাকিস্তানি আর্মি তাদের ধাওয়া করে। তারপর তারা ভারত হয়ে সেই মেয়েকে ব্রিটেনে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। জ্যাকুইন বলছেন, গত ৩০ বছরে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এখন অনেক নারী এই পেশায় আগ্রহী হয়ে উঠেছে, যদিও পুরো যুক্তরাজ্য জুড়ে নারী দেহরক্ষীর সংখ্যা এখনো মাত্র ১০জন। জ্যাকুইন বলছেন, দেহরক্ষী হিসাবে যারা কাজ করবেন, তাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, তারা ক্লায়েন্টের বন্ধু নন। ''তাহলেই আপনার দৃষ্টি পরিষ্কার থাকবে আর যখন দরকার হবে, তখন আপনি ঠিক পদক্ষেপ নিতে পারবেন।'' দেহরক্ষী বলতে য���রকম কালো চশমা পড়া একজন কাউকে মানুষ বুঝে থাকে, বাস্তবে সেটা নাও হতে পারে, বলছেন জ্যাকুইন। বরং তার পোশাকের চেয়ে মস্তিষ্ক অনেক বেশি খাটাতে হয়। হয়তো তাকে নামী রেস্তোরায় ক্লায়েন্টের সঙ্গে বসে খেতে হয়, বিখ্যাত ক্লাবে বিকালের নাস্তায় ঠিক পোশাকে এবং আদবকায়দার সঙ্গে চা খেতে হয়। বিশ্বের চলমান নানা বিষয়ে কথা বলার জন্য খোঁজখবর রাখতে হয়। এই পেশার ঝুঁকির বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছেন না জ্যাকুইন। কিন্তু তিনি বলছেন, ''কোন চাকরি নিয়েই তো আর উদ্বেগে থাকা যায় না।'' জ্যাকুইন ডেভিসের এই জীবন নিয়ে একটি চলচ্চিত্র বানানোর পরিকল্পনা করছে নেটফ্লিক্স। বিবিসি বাংলার আরো খবর: ‘আমার স্বামীকে হত্যা করা হয় ভিন্ন জাতের বলে’ আপনাকে বলা হলো পদত্যাগ করবেন, আপনি করছেন না যুক্তরাজ্যের প্রথম নারী দেহরক্ষী হিসাবে কাজ শুরু করেন জ্যাকুইন ডেভিস, যিনি রাজপরিবারের সদস্য এবং অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিদের জন্য কাজ করেছেন। তার ৩০ বছরের পেশাজীবনে অনেক জিম্মি মুক্ত করেছেন এবং গোপন নজরদারি করেছেন। কিন্তু কেমন ছিল তার সেই জীবন? +text: বঙ্গোপসাগর হচ্ছে সাইক্লোন সৃষ্টির জন্য একেবারে আদর্শ জায়গা বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে রেখেছে যে তটরেখা, সেখানে বাস করে প্রায় ৫০ কোটি মানুষ। বিশ্বের ইতিহাসে যতসব ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আঘাত হেনেছে, তার বেশিরভাগই হয়েছে এই বঙ্গোপসাগরে। ‌'ওয়েদার আন্ডারগ্রাউন্ড‌' নামের একটি ওয়েবসাইটে বিশ্বের ৩৫টি সবচাইতে ভয়ঙ্কর মৌসুমী ঘূর্ণিঝড়ের তালিকা রয়েছে। এই তালিকার ২৬টি ঘুর্ণিঝড়ই বঙ্গোপসাগরে। ঘূর্ণিঝড় আম্পান, যেটি বুধবার বিকেল নাগাদ বাংলাদেশ এবং ভারতের উপকূলে আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, সেটি হবে এধরণের ২৭তম ঘূর্ণিঝড়। ভারতের আবহাওয়া দফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, এই ঘূর্ণিঝড়টি যখন উপকূলে আঘাত হানবে, তখন এটি ভয়ংকর শক্তিশালী হয়ে উঠবে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতি হবে ঘন্টায় ১৯৫ কিলোমিটার (১২১ মাইল)। জলোচ্ছাস হবে প্রায় দোতলা বাড়ির উচ্চতায়। বঙ্গোপসাগরে কেন এত বেশি ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় হয় আবহাওয়াবিদদের মতে, সামূদ্রিক জলোচ্ছাস সবচেয়ে ভয়ংকর হয়ে উঠে অবতল আকৃতির অগভীর বে বা উপসাগরে। মৌসুমী ঘূর্ণিঝড়ের তীব্র বাতাস যখন এরকম জায়গায় সাগরের পানিকে ঠেলতে থাকে, তখন ফানেল বা চোঙার মধ্যে তরল যে আচরণ করে, এখানেও তাই ঘ���ে। সাগরের ফুঁসে উঠা পানি চোঙা বরাবর ছুটতে থাকে। ২০১৯ সালের মে মাসে ভারতের পূর্ব উপকূলে আঘাত হেনেছিল সাইক্লোন ফনি “এরকম ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যের টেক্সটবুক উদাহারণ হচ্ছে বঙ্গোপসাগর,” বলছেন আবহাওয়াবিদ এবং ওয়েদার আন্ডারগ্রাউন্ডের একজন লেখক বব হেনসন। তবে বঙ্গোপসাগরে এর সঙ্গে যুক্ত হয় আরও বাড়তি কিছু বৈশিষ্ট্য। যেমন সমূদ্রের উপরিতল বা সারফেসের তাপমাত্রা। বলছেন ভারতের আবহাওয়া দফতরের প্রধান ডি. মহাপাত্র। এটি পরিস্থিতিকে আরও বিপদজনক করে তোলে। "বঙ্গোপসাগর খুবই উষ্ণ এক সাগর", বলছেন তিনি। পৃথিবীর নানা অঞ্চলে আরো অনেক উপসাগর আছে যেখানে উপকূল বরাবর এই ধরনের জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকি আছে। যেমন লুইজিয়ানার গালফ কোস্ট। "কিন্তু বিশ্বের আর যে কোন উপকূলের চাইতে বঙ্গোপসাগরের উত্তর উপকূল এই ধরনের সার্জ বা জলোচ্ছ্বাসের সবচাইতে বেশি ঝুঁকিতে আছে", বলছেন বব হেনসন। আর এই উপকূলজুড়ে যেরকম ঘনবসতি, সেটা ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিশ্বের প্রতি চারজন মানুষের একজন থাকে বঙ্গোপসাগর উপকূলের দেশগুলিতে। আম্পান নিয়ে কেন এত বেশি উদ্বেগ এই উদ্বেগের প্রধান কারণ এটি একটি ‌'সুপার সাইক্লোন‌'। এই ঘূর্ণিঝড়ের সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতি হবে প্রতি ঘন্টায় ১৩৭ মাইল বা ২২০ কিলোমিটারের বেশি। আম্পান আসছে। উত্তাল হয়ে উঠছে সমুদ্র। ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের জেলেরা মাছ ধরার নৌকা উঠিয়ে রাখছেন। সম্পর্কিত খবর: 'আম্পান' নিয়ে ভারতে হুঁশিয়ারি: মনসুনের আগে বঙ্গোপসাগরে এরকম ঝড় এই শতাব্দীতে প্রথম ঘূর্ণিঝড় আম্পান: উপকূলীয় জেলাগুলোতে জলোচ্ছ্বাসের আশংকা আর সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় বহু ধরনের বিপদ নিয়ে আসে। প্রথমত: প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়া সবকিছু ধ্বংস করে দিতে পারে। দ্বিতীয়ত: ঝড়ের সঙ্গে সঙ্গে সামূদ্রিক জলোচ্ছ্বাস ধেয়ে আসবে। আর ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রচন্ড ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হবে, যাতে বন্যা দেখা দেবে। বঙ্গোপসাগরে বা আরব সাগরে যেসব ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়, প্রতি দশ বছরে তার মাত্র একটি হয়তো এরকম প্রচন্ড ক্ষমতা বা শক্তির ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। উনিশশো সত্তর সালের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশের ভোলায় যে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছিল, সেটি ছিল বিশ্বের ইতিহাসের সবচাইতে প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড়। এতে মারা গিয়েছিল প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ। এই ঘূর্ণিঝড়ের সময় যে জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল তার উচ্চতা ���িল ১০ দশমিক ৪ মিটার বা ৩৪ ফুট। ইতিহাসবিদ ডক্টর সুনিল অমৃত, যিনি হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান, তিনি বলছেন বঙ্গোপসাগরে সাম্প্রতিক সময়ে আরও বেশি ঘনঘন প্রচণ্ড মাত্রার ঘূর্ণিঝড় তৈরি হচ্ছে। ২০০৮ সালের মে মাসে বার্মার উপকূলে আঘাত হেনেছিল সাইক্লোন নার্গিস। সেই সাইক্লোনে অন্তত ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল এবং ২০ লাখ মানুষ তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছিল। একজন সাংবাদিক এই ঘূর্ণিঝড়ের বর্ণনা দিয়েছিলেন এভাবে: “মনে হচ্ছে যেন কাগজের ওপর আঁকা একটি ছবির ওপর কেউ এক বালতি পানি ঢেলে দিয়েছে। অনেক যত্ন করে আঁকা লাইনগুলো (বদ্বীপের নদীপথ) মুছে গেছে। যে কাগজের ওপর ছবিটি আঁকা হয়েছিল সেটি যেন দুমড়ে-মুচড়ে গেছে।” ভারতের সর্বশেষ কোন সুপার সাইক্লোন আঘাত হেনেছিল ১৯৯৯ সালে। তখন উড়িষ্যা রাজ্যে প্রায় দশ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল। ঐ সাইক্লোনের পর আমি উপদ্রুত এলাকায় গিয়েছিলাম। ঘুরে বেরিয়েছিলাম সবচাইতে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো। আমার মনে আছে, খাদের মধ্যে পড়ে ছিল পঁচা-গলা লাশ। নিহতদের শবদেহ যখন চিতায় পোড়ানো হচ্ছিল তখন আকাশ যেন ঢেকে গিয়েছিল চিতার আগুনের ধোঁয়ায়। বঙ্গোপসাগরের সুপার সাইক্লোনের অবারিত ক্রোধ কতটা বিধ্বংসী হতে পারে, সেটা আমি তখন প্রথম বুঝতে পেরেছিলাম। ঐতিহাসিক সুনিল অমৃত বঙ্গোপসাগরকে বর্ণনা করেছেন এভাবে: এক বিস্তীর্ণ জলরাশি, যা জানুয়ারিতে একেবারে শান্ত এবং নীল‌; আর গ্রীষ্মের বৃষ্টিতে এটির রূপ একেবারে ভিন্ন। ফুঁসতে থাকা ঘোলা জলের সমূদ্র। +text: উহানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক রোগী। এই উহান শহর থেকেই চীনে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সূচনা - যা এখন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, উহান শহরটি যে প্রদেশের অন্তর্গত - সেই হুবেইয়ের সুস্থ বাসিন্দাদের চলাফেরার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা ছিল, তা মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে প্রত্যাহার করা হবে। এক সপ্তাহ ধরে উহানে নতুন কোন করোনাভাইরাস রোগী না পাওয়া গেলেও মঙ্গলবার এক ব্যক্তির দেহে নতুন সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে বিশ্বের অনেক দেশই এখন পুরোপুরিভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। গত জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকেই উহানকে সারা বিশ্ব থেকে আলাদা করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু এখন কর্মকর্তারা বলছেন, যাদের ফোনের অ্যাপে বিশেষভাবে ইস্যু করা সবুজ কোড রয়ে���ে, তারা আগামী ৮ই এপ্রিল থেকে উহান ত্যাগ করতে পারবেন। উহানের এক গাড়ি নির্মাণ কারাখানায় দুপুরের খাবার খাচ্ছেন শ্রমিকরা। সরকারি হিসেব মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় চীনের মূল ভূখণ্ডে প্রায় ৮০ জনের দেহে নতুন করে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে। কিন্তু এদের মধ্যে ৭৬ জনই সংক্রমিত হয়েছেন ‘বিদেশ থেকে আসা’ ব্যক্তিদের মাধ্যমে। করোনাভাইরাসের এই ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ চীন ছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়া এবং সিঙ্গাপুরেও লক্ষ্য করা গেছে। যদিও দুটি দেশই গত কয়েক সপ্তাহে এই ভাইরাসের বিস্তার রোধে বেশ সফল হয়েছে। সাংহাই থেকে বিবিসির সংবাদদাতা রবিন ব্র্যান্ট জানাচ্ছেন, চীন নিজেকে একটি ‘করোনা-উত্তর’ দেশ হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। উহানের রেলওয়ে স্টেশনে অল্প কয়েকজন যাত্রী। গত সপ্তাহের উহানের মেডিকেল কর্মীরা ব্রিটেনকে সতর্ক করেছে এই বলে যে তারা যেন তাদের ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন। বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের রক্ষার্থে যেন সংক্রমণ-প্রতিরোধী পোশাক-পরিচ্ছদ সরবরাহ করা হয়। করোনাভাইরাসের ‘দ্বিতীয় ঢেউ' নিয়ে চীনের ভেতরে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে বলে তিনি জানাচ্ছেন। এরই মধ্যে চীনের কিছু শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিক সোশাল মিডিয়ায় এই তত্ত্ব প্রচার করছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র করোনাভাইরাসকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে এবং তারা উহানে এই ভাইরাস ছড়িয়ে দিয়েছে। ইতালিতে উহানের আগে থেকেই কোভিড-১৯ উপস্থিত ছিল বলেও তারা বলার চেষ্টা করছেন। বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, এসব বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে চীন তার নিজের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে মানুষের মনে সন্দেহ ঢুকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে এবং প্রতিষ্ঠিত সত্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। করোনাভাইরাস চিকিৎসার জন্য কি যথেষ্ট ভেন্টিলেটর আছে করোনাভাইরাস এলো কোত্থেকে, ছড়ালো কিভাবে- যতসব ষড়যন্ত্র তত্ত্ব করোনাভাইরাস: শঙ্কায় আর হয়রানির মুখে দেশে ফেরা প্রবাসীরা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে কেন অন্যের থেকে দু'মিটার দূরে থাকবেন করোনাভাইরাস নিয়ে যেসব ভিত্তিহীন পরামর্শে আদৌ কান দেবেন না করোনাভাইরাস গাইড: আপনার প্রশ্নের উত্তর করোনাভাইরাস: বর্তমান অবস্থা শেষ হতে কত সময় লাগবে? বিশ্বের নানা দেশ যখন করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে মরিয়া হয়ে লড়ছে - তখন চীনের কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে যে আগামী ৮ই এপ্রিল থেকে উহান শহরে আংশিকভাবে লকডাউন উঠে যাবে। +text: খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় কারাভোগ করছেন, তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না নির্বাচনে জয়ী হলে তিনিই যে আবার প্রধানমন্ত্রী হবেন তাতে কোন সন্দেহ নেই দলটির নেতা-কর্মীদের মধ্যে। কিন্তু এর বিপরীত অবস্থা আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি'র ক্ষেত্রে। দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এখন দণ্ডিত হয়ে কারাগারে এবং তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না। বিএনপি আছে দুটি রাজনৈতিক জোটে। তার একটি হলো জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং সেই জোটের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেনও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। ফলে প্রশ্ন উঠছে বিএনপি কিংবা ঐক্যফ্রন্ট কাকে নেতা হিসেবে সামনে রেখে নির্বাচন করছে? তারা বিজয়ী হলে প্রধানমন্ত্রী হবেন কে? বিষয়টি নিয়ে অবশ্য বিএনপি'র সাধারণ কর্মীদের সাথে কথা বলে দেখা গেল, তাদের মধ্যে কোন সংশয় নেই। ঢাকার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে চট্ট্রগাম থেকে আসা বেলায়েত হোসেন নামে এক কর্মী বলছিলেন, খালেদা জিয়া কারাগারে থাকলেও নেতৃত্ব নিয়ে দলের নির্বাচনী কাজে কোন সংকট নেই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী সকল প্রস্তুতি। "ম্যাডাম কারাগারে এবং নির্বাচন থেকে তাকে দূরে রাখা হয়েছে। এটা আমাদের জন্য বড় একটা ক্ষতি। কিন্তু ম্যাডাম না থাকলেও তিনিই আমাদের মূল নেতা। কারাবরণের আগে তিনি যে নির্দেশনা দিয়ে গেছেন, সেভাবেই আমাদের কাজ চলছে।'' ''আমাদের নেতাদের মধ্যে কোন ফাটল ধরে নাই। কেউ সরকারের ফাঁদে পা দেয় নাই। আমরা দেখতে পাচ্ছি, নেতারা একসঙ্গে মিলে দল চালাচ্ছেন।'' - বলছিলেন মি. বেলায়েত। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: ভোটের মাঠে খালেদা জিয়ার না থাকা কী প্রভাব ফেলবে? কেন নির্বাচন করছেন না ড. কামাল হোসেন সংসদ নির্বাচন: অংশ নিচ্ছে বিএনপি জামায়াতকে ধানের শীষ: কিভাবে দেখছে ঐক্যফ্রন্ট? দুই রাজনৈতিক জোটে আসন ভাগাভাগির কতদূর? নির্বাচনে অংশ নিতে অযোগ্য ঘোষিত হলেও কারাগারে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ইমেজকে সামনে রেখেই নির্বাচনী প্রচারণার পরিকল্পনা করছে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপি বলছে, খালেদা জিয়া না থাকলেও তার ইমেজকে সামনে রেখেই নির্বাচনের মাঠে থাকবে নেতা-কর্মীরা। ঐক্যফ্রন্ট নেতা ও গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরীও বলছেন, নির্বাচনে খালেদা জিয়ার কারাবরণের ইস্যুটিকে কাজে লাগিয়ে সাধারণ জনগনের সহানুভূতি আদায়ের কৌশল থাকবে তাদের। "আমরা তো মনে করি খালেদা জিয়ার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। তাকে জামিনও দেয়া হচ্ছে না, নির্বাচন থেকেও দূরে রাখা হয়েছে। বিএনপি এবং আমরা এটা নিয়ে জনগনের কাছে যাবো। জনগনের মধ্যেও এটা নিয়ে ক্ষুব্ধ মনোভাব রয়েছে। আমরা সেটা কাজে লাগাবো।" জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচন করবে নাকি মহাজোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। কিন্তু বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট যদি নির্বাচনে জেতে - তাহলে কে হবেন প্রধানমন্ত্রী? বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে অবশ্য বোঝা যাচ্ছে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন সিদ্ধান্ত বা পরিকল্পনা এখনো ঠিক করা হয়নি জোটের পক্ষ থেকে। যদিও এক্ষেত্রে বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ প্রচ্ছন্নভাবে খালেদা জিয়ার কথাই বলছেন। "বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ২০০৮ সালে প্যারোলে থাকা অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীত্বের শপথ নিয়েছিলেন। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর কোন কিছুই তার সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।" "আমরা যদি নির্বাচনে জয়ী হতে পারি, তাহলে তখন বেগম খালেদা জিয়ার কী হবে সেটা নিয়ে কোন প্রশ্নই থাকবে না। কোন সংকট থাকবে না। সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।" জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেনও নির্বাচন করছেন না কিন্তু বিএনপি নির্বাচনে জয়ী হলেও মিসেস জিয়ার দণ্ডাদেশ কিংবা সংসদ সদস্য পদ না থাকায় তার সামনে যে আইনী প্রতিবন্ধকতা থাকবে সেটাকেও গুরুত্ব দিতে চাননা মি. মওদুদ। তার মতে, রাজনীতিই সব ঠিক করে দেবে। প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধনের পথও খোলা আছে। স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে, নির্বাচনে জয়ী হলে খালেদা জিয়াকেই প্রধানমন্ত্রী বানানোর পথ খুঁজতে চায় বিএনপি। যদিও ঐক্যফ্রন্টের নেতা সুব্রত চৌধুরী বলছেন, সবকিছু ঠিক হবে নির্বাচনের পর। মি. চৌধুরী বলছিলেন, "কামাল হোসেন প্রধানমন্ত্রী হবেন নাকি খালেদা জিয়া নাকি অন্য কেউ সেটা নির্ধারণ করা হবে নির্বাচনে বিজয়ের পর। এটা নিয়ে কোন জটিলতা হবে না। আমাদের মধ্য থেকেই কেউ একজন হবেন। " "কিন্তু তার আগে আমাদের নির্বাচনে জিততে হবে। এখন সেখানেই মনযোগ দিতে হবে।" কোন জোটে না গিয়ে এককভাবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। বোঝা যাচ্ছে, ভবিষ্যত নেতৃত্ব নিয়ে ঐক্যফ্রটের দলগুলোর মধ্যে যে চিন্তা-ভাবনা, সেখানে বেশ পার্থক্য আছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক রাশেদা রওনক খান মনে করেন, নির্বাচনের আগেই ভোটারদের এ বিষয়ে পরিস্কার একটা ধারণা দেয়া উচিত ঐক্যফ্রন্টের। নইলে তা প্রভাব ফেলতে পারে ভোটের মাঠে। "মানুষ কিন্তু ভোট দেয় নেতা দেখে। কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, সেটা বুঝতে চায় সবাই। ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে এটা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা আছে।" এদিকে ঐক্যফ্রন্টের বাইরে আরো যেসব দল নির্বাচনী দৌড়ে রয়েছে, শেষপর্যন্ত তারা কোনো জোটে থাকবে নাকি এককভাবে নির্বাচনে আসবে সেটাও এখনো পরিস্কার নয়। আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের সঙ্গে জোট বাধার কথা থাকলেও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি এককভাবে দু'শো দশটি আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে। মহাজোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়েও এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। অন্যদিকে চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন এককভাবে অংশ নিচ্ছে এবারের নির্বাচনে। তবে এসব দল ও জোট অবশ্য একক নেতৃত্বেই পরিচালিত হচ্ছে। বাংলাদেশে নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ তাদের যে সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিচ্ছে তাতে মূলত: নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। +text: সুস্থ হয়ে ওঠার বিষয়টি নির্ভর করবে আপনি কতটা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তার ওপরে। অনেক মানুষ সামান্য কিছু উপসর্গ নিয়েই দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন, কিন্তু অন্যদের জন্য এটা দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে বয়স, লিঙ্গ এবং অন্যান্য শারীরিক বিষয়ও গুরুতর অসুস্থতার কারণ হয়ে ওঠে। যত গভীর চিকিৎসা আপনাকে নিতে হয়েছে, যত বেশি সময় লেগেছে, আপনার সুস্থ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রেও ততটাই সময় লাগবে। আমার যদি সামান্য কয়েকটি উপসর্গ থাকে, তাহলে কী হবে? যারা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছে, তাদের বেশিরভাগের ক্ষেত্রে কাশি বা জ্বরের মতো প্রধান উপসর্গগুলো দেখা গেছে। তবে তারা শরীরের ব্যথা, ক্লান্তি, গলা ব্যথা এবং মাথা ব্যথা অনুভব করতে পারেন। প্রথমদিকে শুষ্ক ধরণের কাশি হতে পারে। কিন্তু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ভাইরাসের খেয়ে ফেলা ফুসফুসের মৃত কোষমুক্ত শ্লেষ্মা কাশি শুরু হতে পারে। মূলত বিশ্রাম, বেশি করে তরল পান এবং প্যারাসিটামলের মতো ব্যথানাশক ব্যবহার এসব ক্ষেত্রে চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে। হালকা লক্ষণ যাদের থাকে, তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন। এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে জ্বর চলে যায়, তবে কাশি আরও কিছুদিন থাকতে পারে। চীনের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব ক্ষেত্রে সুস্থ হয়ে উঠতে গড়পড়তা দুই সপ্তাহ সময় লাগে। কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? বিশ্ব মহামারি শেষ হতে কতদিন লাগবে? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় করোনাভাইরাস নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন আমার যদি গুরুতর লক্ষণ-উপসর্গ থাকে, তাহলে কী হবে? এই রোগটি অনেকের জন্য গুরুতর হয়ে উঠতে পারে। এটি সংক্রমণের সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে ঘটে থাকে। এই পরিবর্তন অনেক সময় হঠাৎ হয়ে থাকে। শ্বাস নিতে কষ্ট হয় এবং ফুসফুস ফুলে যায়। এর কারণ হলো, শরীরের ভেতরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার চেষ্টা করে। এটা আসলে শরীরের প্রতিক্রিয়া তৈরির চেষ্টা, যার ফলে শরীরের ভেতরের অনেক ক্ষতি হয়ে যায়। এই সময়ে অনেক মানুষকে অক্সিজেন সহায়তা দেয়ার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। চিকিৎসক সারাহ জার্ভিস বলছেন, ''শ্বাসকষ্টের এই ব্যাপারটি ভালো হয়ে উঠতে অনেক সময় লেগে যায়... শরীর তার ভেতরের কষ্টের ব্যাপারগুলো কাটানোর চেষ্টা চালিয়ে যায়।'' তিনি বলছেন, সুস্থ হয়ে উঠতে দুই থেকে আট সপ্তাহ সময় লেগে যেতে পারে, যদিও আরও কিছুদিন ক্লান্তি ভাব থেকে যাবে। আমার যদি নিবিড় পরিচর্যা দরকার হয়, তাহলে কী হবে? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ধারণা করছে, প্রতি ২০ জন রোগীর ভেতরে একজনের নিবিড় পরিচর্যার দরকার হয়ে থাকে, যার মধ্যে রয়েছে ঘুম পাড়িয়ে রাখা এবং ভেন্টিলেটর দেয়ার মতো ব্যবস্থাগুলো। যেকোনো ধরণের অসুস্থতাই হোক না কেন, নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট থেকে ফিরে সুস্থ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে বেশ সময় লাগে। বাড়ি যাবার আগে রোগীদের নিয়মিত ওয়ার্ডে পাঠানো হয়ে থাকে। ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন ফ্যাকাল্টির ডিন অ্যালিসন পিটার্ড বলছেন, ক্রিটিক্যাল কেয়ার বা ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) থেকে বেরিয়ে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে ১২ থেকে ১৮ মাস লেগে যেতে পারে। ''পুরোপুরি সুস্থ ��য়ে ওঠার জন্য মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তারও দরকার।'' হাসপাতালের বিছানায় দীর্ঘদিন শুয়ে থাকলে শরীরের পেশির ক্ষয় হয়ে যায়। রোগীরা দুর্বল হয়ে পড়েন এবং পেশী পুনরায় তৈরি হতে সময় লেগে যায়। অনেকের এজন্য ফিজিওথেরাপির সহায়তাও দরকার হয়। আইসিইউতে থাকার সময় শরীর যেসব পর্যায়ের ভেতর দিয়ে যায়, সে কারণে অনেকের মধ্যে প্রলাপ বকা এবং মানসিক সমস্যা হওয়ারও সম্ভাবনা দেখা দেয়। চীন ও ইতালির রোগীদের ক্ষেত্রে পুরো শরীরের দুর্বলতা, সামান্য শারীরিক পরিশ্রমের পরেও শ্বাসকষ্ট হওয়া, ক্রমাগত কাশি এবং অনিয়মিত শ্বাসপ্রশ্বাসের খবর পাওয়া গেছে। সেই সঙ্গে অনেক ঘুমেরও দরকার হয়। কার্ডিফ এন্ড ভেল ইউনিভার্সিটি হেলথ বোর্ডের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ফিজিওথেরাপিস্ট পল টুজ বলছেন, ''আমরা জানি, পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে রোগীরা অনেক সময় নেন, অনেক সময় সেটা কয়েক মাস হয়ে যায়।'' কিন্তু সবার ক্ষেত্রে সাধারণভাবে এটা বলাও কঠিন। অনেক মানুষ ক্রিটিক্যাল কেয়ারে তুলনামূলকভাবে অল্প সময় থাকেন। আবার অনেককে দীর্ঘদিন ভেন্টিলেটরের সহায়তাও দিতে হয়। করোনাভাইরাস কি আমার স্বাস্থ্যের জন্য দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে? যেহেতু এই বিষয়ে এখনো দীর্ঘমেয়াদী কোন তথ্য উপাত্ত নেই, তাই এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কারো জানা নেই। কিন্তু অন্যান্য অবস্থার কথা বিবেচনা করে দেখা যেতে পারে। অ্যাকুইট রেসপিরেটরি ডিসট্রেস সিনড্রোম (যাকে আরডস বলা হয়ে থাকে) এমন সব রোগীদের মধ্যে তৈরি হয় যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বিষয়টি অতিরিক্ত চাপের ভেতর দিয়ে যায়, যা তাদের ফুসফুসের ক্ষতি করে দেয়। মি. টুজে বলছেন, ''এক্ষেত্রে আমরা দেখেছি যে, মানুষজন পাঁচ বছর পরেও শারীরিক ও মানসিক জটিলতার মুখোমুখি হয়েছেন।'' সুস্থ হতে অনেকের ফিজিওথেরাপির সহায়তাও দরকার হয়। ওয়ারউইক মেডিকেল স্কুলের প্রভাষক ডক্টর জেমস গিল বলছেন, ''পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তারও দরকার।'' ''আপনার যদি শ্বাসকষ্ট হয়, তখন হয়তো চিকিৎসক বলছেন, আমরা তোমাকে এখন ভেন্টিলেটরে নিয়ে যাবো। আমরা তোমাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখবো। আপনি কি আপনার পরিবারকে বিদায় জানাতে চান?'' এই গুরুতর রোগীদের মধ্যে পিটিএসডি [পোস্ট-ট্রোমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার] দেখা দেয়া আশ্চর্যজনক নয়। অনেকের উল্লেখযোগ্য মনস্তাত্ত্বিক ��্ষত তৈরি হতে পারে।'' অনেক সময় হালকাভাবে আক্রান্ত হলেও সেটা দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ানোর সম্ভাবনাও রয়েছে। কতো মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছেন? এ বিষয়ে সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া দুষ্কর। ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়েছে পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার ৩৮৮ জন। যদিও আক্রান্ত হয়েছেন ২২ লাখের বেশি মানুষ। তবে অনেক দেশে এই হিসাব রাখার পদ্ধতি আলাদা। অনেক দেশ সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের তথ্য প্রকাশ করে না। অনেক ক্ষেত্রে সামান্য বা হালকা আক্রান্ত ব্যক্তিদের তথ্য হিসাবের বাইরে থেকে যায়। গণিত মডেলের হিসাবে বলা যায়, ৯৯-৯৯.৫ শতাংশ মানুষ সুস্থ হয়ে ওঠেন। মরক্কোয় হাসপাতাল ছাড়ার সময় একজন কোভিড-১৯ আরোগ্য হওয়া ব্যক্তি হাসপাতালের মেঝেতে চুমু খাচ্ছেন আমার কি আবার কোভিড-১৯ হতে পারে? আবারো রোগটি হওয়ার বিষয়ে প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে অনেক জল্পনা কল্পনা আছে, কিন্তু নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ রয়েছে খুব কম। রোগীরা যদি ভাইরাসের বিরুদ্ধে সফলভাবে লড়াই করে জয়ী হতে পারে, তারা হয়তো শরীরের ভেতর একটি প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্ম দেয়। করোনাভাইরাসের টিকা কতটা কার্যকর বা সফল হতে পারে, সেটি বোঝার ক্ষেত্রে পুনরায় ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া থেকে প্রতিরোধ করতে পারার এই ক্ষমতার বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৯ সালের শেষ নাগাদ কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছে, কিন্তু এখনি বোঝা যাচ্ছে যে, অনেক রোগীর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে লম্বা সময় লাগবে। +text: গাজার সবচেয়ে গভীর ও দীর্ঘ সুড়ঙ্গটি পর্যবেক্ষণে রেখেছিলো ইসরায়েলি বাহিনী। এ বিষয়ে ইসরাইলের প্রতিরক্ষমন্ত্রী এভিগদর লিবারম্যান জানান, এটি এখন পর্যন্ত আবিস্কৃত সুড়ঙ্গগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গভীর ও দীর্ঘ। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জোনাথন কনরিকাস জানান, ২০১৪ সালের গাজা যুদ্ধের সময় সুড়ঙ্গটি খোঁড়া হয়। কেননা ওই যুদ্ধের সময় সময় তারা হামলার আশঙ্কায় ৩০টিরও বেশি সুড়ঙ্গ ধ্বংস করে দিয়েছিলো। কেউ যেন আর কোন টানেল নির্মাণ করতে না পারে সেজন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেন এই সেনা কমান্ডার। আরো পড়ুন: বিক্ষোভে উত্তাল গাজা সীমান্তে ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি গাজায় ফিলিস্তিনি-ইসরায়েলি সংঘাতে এত মৃত্যু কেন? তার দাবি, ফিলিস্তিনের সশস্ত্��� বাহিনী হামাস হামলার উদ্দেশ্যে এই সুড়ঙ্গটি খুড়েছে। সুড়ঙ্গটি গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলীয় জাবালিয়া অঞ্চল থেকে শুরু হয়ে ইসরাইলী নাহাল ওজি শহরের কয়েক মিটার পর্যন্ত প্রবেশ করেছে বলে জানান তিনি। তবে টানেলটির বের হওয়ার কোন পথ নির্মাণ করা হয়নি। হামলার সুবিধার্থে এই সুড়ঙ্গটির সঙ্গে আরেকটি সুড়ঙ্গ জোড়া দেয়া ছিলো বলেও জানান এই ইসরাইলী সেনা। গত সপ্তাহেই ইসরাইলি বাহিনী সুড়ঙ্গটির ভেতর বিভিন্ন বস্তু ঠেসে দেয় যেন দীর্ঘদিন এটি কেউ ব‍্যবহার করতে না পারে। গাজায় চলতি মাসে এ নিয়ে ৫টি সুড়ঙ্গ ধ্বংস করা হলো। এরমধ্যে কয়েকটি সুড়ঙ্গ ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদ এবং বাকিগুলো গাজা নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের তৈরি বলে দাবি করেন ইসরায়েলি সেনা মুখপাত্র জোনাথন। গাজা উপত্যকায় গোপন সুড়ঙ্গের শনাক্তে গত বছর থেকে বিশেষ উপকরণ নিয়ে মাঠে নেমেছিলো ইসরায়েল। এবার তারা নতুন সুড়ঙ্গ নির্মাণ প্রতিরোধে শুধু মাটির ওপরে নয় বরং সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোয় মাটির নীচেও হাইটেক সীমান্ত বেষ্টনি স্থাপন করতে শুরু করেছে। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সীমান্ত ছাড়িয়ে যাওয়া একটি গোপন সুড়ঙ্গ ধ্বংস করেছে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী এই সুড়ঙ্গটি নির্মাণ করেছে দাবি তাদের। +text: হঠাৎ সুদের হার অর্ধেক হবার ঘোষণায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকেরা । সুদের নতুন হার ১৩ই ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে, অর্থাৎ এর আগে যারা আমানত রেখেছেন তারা পূর্ব নির্ধারিত হারেই সুদ পাবেন। তবু্ও ভরসা রাখতে পারছেন না আমানতকারীরা। তাদেরই একজন ড. নাজমুল হক। তার ছেলেমেয়েরা বিদেশে যাবার আগে জমি জমা বিক্রি করে ডাকঘর সঞ্চয়পত্রে স্কিমে তিরিশ লাখ টাকা রেখেছিলেন। নতুন সুদহারের ঘোষণা শুনে তিনি রাজধানীর জিপিও-তে ছুটে এসেছেন। মি. হক বলছিলেন, "ত্রিশ লাখ টাকার পুরোটাই তুলে নিয়ে যাব আমি। অনেক আশা করে এখানে টাকা রেখেছিলাম, ছেলেমেয়েরা এসে দেখবে যা পাবার কথা ছিল কিছুই নেই।" আরো পড়ুন: আয়ের কতটা সঞ্চয় করা উচিত? কীভাবে? বাংলা ভাষা সম্পর্কে আপনি কতটা জানেন? লন্ডনের মসজিদে মুয়াজ্জিনের ওপর হামলা, সন্দেহভাজন আটক অবসরপ্রাপ্ত পেনশনভোগীদের অনেকেই টাকা রাখেন ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমে । এর আগেও সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ নিরুৎসা���িত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এ বছর সঞ্চয়পত্রের সুদের ওপর উৎসে আয়কর কর্তনের হার দুইগুণ বাড়ানো হয়। আরোপ করা হয় নানা শর্ত। এর ফলে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন গৃহিণী নীলা খন্দকারের মত অনেকেই , যাদের দৈনন্দিন ব্যয়ের পুরোটাই নির্ভর করে সঞ্চয়পত্রের ওপরে। মিসেস খন্দকার বলছিলেন, "বড় ক্ষতির মুখে পড়বো আমি। আমার জীবনযাত্রায় এখন বড় পরিবর্তন আসবে। খাওয়া দাওয়ার খরচ কমাতে হবে। বিনিয়োগের আগ্রহই হারিয়ে ফেলেছি। কিন্তু আর কোথায়ই বা যাব?" জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ডাকঘরে সঞ্চয়ে নিট বিনিয়োগ ছিল প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। তবে মোট জাতীয় সঞ্চয় স্কিমে জমা ৮৪ হাজার ২০০ কোটি টাকার তুলনায় এ অর্থ নিতান্তই কম। তাই সরকারের সিদ্ধান্তকে 'একেবারেই অযৌক্তিক' বলে মনে করেন বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. নাজনীন আহমেদ। সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ । তিনি বলেন, "সরকার ব্যাংকের আমানতের ক্ষেত্রে ৬ শতাংশ ও ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ৯ শতাংশ সুদ বাস্তবায়নের জন্য এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যাংকে বিনিয়োগ অবশ্যই বাড়াতে হবে, তবে সেটা নিম্ন আয়ের মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে নয়। এ অল্প পরিমাণ সঞ্চয়ে সুদ কমিয়ে ব্যাংকে বিনিয়োগ বাড়ানো অসম্ভব ব্যাপার।" বিনিয়োগের পরিবেশ নিশ্চিত করতে না পারলে শুধু ব্যাংকের সুদের হার কমিয়ে ঐ খাতে বিনিয়োগ নিশ্চিত করা যাবে না বলে মনে করেন আরেক অর্থনীতিবিদ ফাহমিদা খাতুন। সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ এর এই নির্বাহী পরিচালক বলেন, "মানুষ ব্যাংকের ওপর আস্থা হারিয়েছে। শেয়ার বাজার বা বন্ড মার্কেটে তাদের অতীত অভিজ্ঞতাও বেশ নেতিবাচক। সরকারের উচিত হবে অল্প আয়ের মানুষদের জন্য নিরাপদ সঞ্চয়ের সুযোগ রাখা।" বাংলাদেশে প্রবীণ, কর্মহীন বা দরিদ্র মানুষের জন্য ব্যাপক অর্থে কোন সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী নেই। সুদের হার কমানোর এ সিদ্ধান্তের ফলে সরকারের দারিদ্র্য বিমোচন লক্ষ্যমাত্রাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। নানা মহলের সমালোচনার পর ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমে সুদের হার পুনর্বিবেচনার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তবে তা কবে এবং ঠিক কত হারে হতে পারে তা এখনো অনিশ্চিতই রয়ে গেছে। বাংলাদেশে সাধারণত স্বল্প আয়ের মানুষ, অবসরপ্রাপ্ত পেনশনভোগী এবং শহরের বাইরে গ্রামে যারা থাকেন, অর্থ সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে তাদের কাছে ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক বেশ জনপ্রিয়। হঠাৎ সুদের হার অর্ধেক হবার ঘোষণায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকেরা। +text: অভিযোগকারী ই. জিন ক্যারল ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ই. জিন ক্যারল নামের ওই নারী সম্প্রতি অভিযোগ করেছেন যে ডোনাল্ড ট্রাম্প নিউ ইয়র্কের একটি ডিপার্টমেন্ট স্টোরে তার ওপর যৌন হামলা চালিয়েছিলেন। কিন্তু মি. ট্রাম্প বলছেন, মিজ ক্যারল 'সম্পূর্ণ মিথ্যা' কথা বলছেন। "অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে আমি বলবো: প্রথমত, তাকে আমার পছন্দ নয়। দ্বিতীয়ত, এরকম কখনো ঘটেনি। এটা কখনো হয়নি, ঠিক আছে?" নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত দ্য হিল নামের একটি সাময়িকীকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেছেন। "তিনি আমার পছন্দের নন"- প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর ই জিন ক্যারল সিএনএনকে বলেছেন, "আমি যে তার পছন্দের নই এতে আমি খুশি।" এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০১৬ সালে আরো একজন অভিযোগকারীর বিষয়েও একই ধরনের মন্তব্য করেছিলেন। জেসিকা লিডস নামের এক নারী অভিযোগ করেছিলেন যে মি. ট্রাম্প ১৯৮০-এর দশকে বিমানে তার গায়ে হাত দিয়েছিলেন। এই অভিযোগের জবাবে মি. ট্রাম্প এক সমাবেশে বলেছিলেন, "তিনি আমার প্রথম পছন্দ হবেন না।" এনিয়ে ই জিন ক্যারলসহ মোট ১৬ জন নারী মি. ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনলেন। মি. ট্রাম্প অবশ্য সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন। ই. জিন ক্যারল বলছেন, একটি পোশাকের দোকানে মি. ট্রাম্প তাকে ধর্ষণ করেছেন। কী অভিযোগ করছেন মিজ ক্যারল পঁচাত্তর বছর বয়সী মিজ ক্যারল গত শুক্রবার দ্য ওয়াল ম্যাগাজিনের কাছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন। পরে সিএনএন এবং এমএসএনবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও তিনি বলেছেন যে তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করার কথাও বিবেচনা করছেন। ই জিন ক্যারল বলছেন, নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনে বার্গডর্ফ গুডম্যান নামের একটি অভিজাত পোশাকের দোকানে কেনাকাটা করার সময় ১৯৯৫ সালের শেষের দিকে কিম্বা ১৯৯৬ সালের শুরুতে তাদের দেখা হয়েছিল। টেলিভিশনে অ্যাপ্রেন্টিস অনুষ্ঠানের জন্যে সেসময় খুবই পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রোপার্টি ব্যবসা থেকে প্রচুর অর্থ-ব���ত্তেরও মালিক হয়েছিলেন তিনি। ফলে অনেকেই তাকে চিনতো। মিজ ক্যারল বলছেন, ওই দোকানে মি. ট্রাম্প একজন নারীর জন্যে পোশাক কেনার ব্যাপারে তার কাছে পরামর্শ চেয়ে কৌতুক করে বলেছিলেন যে তিনি ওই পোশাকটি পরে তাকে দেখাতে পারেন কিনা। পরে ট্রায়াল রুমে মি. ট্রাম্প তাকে একটি দেয়ালের সাথে চেপে ধরে তাকে ধর্ষণ করেছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন। আরো পড়তে পারেন: রাজবধূ মেগান মার্কেলকে 'খারাপ' বলেননি ট্রাম্প? ট্রাম্প আর সাদিক খানের মধ্যে এই বাকযুদ্ধ কেন? ট্রাম্পের কাছ থেকে 'চমৎকার চিঠি' পেয়েছেন কিম জং-আন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত ১৬ জন নারী যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন। কী বলছেন মি ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে সোমবার দ্য হিল সাময়িকীকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মি. ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে আনা মিজ ক্যারলের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মিজ ক্যারলের প্রকাশিতব্য একটি বই-এ এসব অভিযোগের ব্যাপারে বিস্তারিত লেখা হয়েছে বলে বলা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এও বলেছেন যে তিনি মিজ ক্যারলকে চেনেন না। কিন্তু নিউ ইয়র্কের ওই ম্যাগাজিনে তার সাথে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একটি ছবিও ছাপা হয়েছে। "কোন মানুষ যে এমন বক্তব্য দিতে পারে সেটা ভয়ঙ্কর," বলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এর আগেও মি. ট্রাম্প বলেছেন যে মিজ ক্যারল তার "বই বিক্রি করার জন্যে এসব ফেক নিউজ বা ভুয়া খবর ফেঁদেছেন।" আরো পড়তে পারেন: সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় ৬৫ শতাংশ মাদ্রাসা শিক্ষার্থী মাইক হাসির চোখে সাকিব সর্বকালের সেরা তালিকায় ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে আলোচ্য বিষয় কী? মুসলিম যুবক হত্যার ঘটনায় ভারতে পাঁচজন গ্রেফতার যুক্তরাষ্ট্রের একজন নারী কলামিস্ট প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ১৯৯০-এর দশকে তাকে ধর্ষণের যে অভিযোগ করেছেন মি. ট্রাম্প তা আবারও অস্বীকার করে বলেছেন, "তিনি আমার পছন্দের নন।" +text: হোলি আর্টিজান বেকারি সেদিন রাত ন'টা থেকে পরদিন সকালে কমাণ্ডো অভিযানের আগ পর্যন্ত হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁর ভেতরে কি চলছিল? জিম্মিদের কখন হত্যা করা হয়েছে? বেঁচে যাওয়াদের সাথে কি আচরণ করেছে জঙ্গিরা? হামলাকারীরা কতজন ছিল? বিবিসি বাংলার সাথে কথা বলেছেন ওই রেস্তোরাঁয় খেতে আসা শারমিনা পারভীন, আর ওই রেস্তোরাঁর একজন বাবুর্চি দেলোয়ার হোসেন। শুক্রবার রাত ন’টার দিকে গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের হলি আর্টিজান রে��্তোরাঁর চিত্রটা অনেকটা এই রকম। লন আর বসবার জায়গাগুলোতে বসে আছেন জাপানি অতিথিদের একটি দল, ইটালিয়ান অতিথিদের বড় একটি দল, ছোট ছোট দলে বিভক্ত আরো কিছু বাংলাদেশী এবং আরো দুটি দেশের নাগরিক। কারো কারো টেবিলে খাবার দেয়া হয়েছে, কারো জন্য খাবার তৈরি হচ্ছে। রেস্তোরার একজন বাবুর্চি দেলোয়ার হোসেন, রসুইঘরে পৌঁছানো অর্ডারের মধ্যে পাস্তা, মাছ, গরুর মাংস এবং মুরগির মাংসের আইটেমের কথা মনে করতে পারলেন। আর খেতে আসা অতিথিদের একজন শারমিনা পারভীন করিম, তখন তারা সপরিবারে বসে কেবলমাত্র খাবারের অর্ডার দিতে যাচ্ছেন। তার সাথে দুই সন্তান ও স্বামী বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিম। হোলি আর্টিজানের সামনের রাস্তায় নিরাপত্তা বাহিনীর অবস্থান “খাবার অর্ডার করতে যাব। মেন্যু দিয়ে গেছে। সেই মুহুর্তেই গোলাগুলির শব্দ। "কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখি তারা আমাদের সামনে। শব্দ শুনে যেটা বুঝলাম, ওরা বাইরে লনে এ্যাটাক করেই তারপর ভেতরে এসেছিল। আমাদেরকে হেড ডাউন করতে বলল। আমরা মুসলিম কিনা জিজ্ঞেস করল। ওই টেবিলে শুধু আমাদের ফ্যামিলিই ছিলাম” - বলছিলেন মিসেস করিম। "তারপর আমাদের সামনে ও পেছনের টেবিলে যারা ছিল তাদের শুট করল এবং চাপাতি দিয়ে কোপানো শুরু করল। আগে গুলি করে তারপর কাছে গিয়ে কুপিয়েছে।” মিসেস করিমের বক্তব্য যদি সঠিক হয়, তাহলে শুক্রবার রাত নটার কিছু আগে বা পরেই লাশে পরিণত হয়েছিলেন হতভাগ্য ৭ জন জাপানী, ৯ জন ইটালিয়ান, একজন ভারতীয়, দুজন বাংলাদেশী এবং একজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক। তারপর প্রায় সারারাত ধরেই একটি টেবিলে করিম পরিবারকে বসিয়ে রাখা হয়। তাদের টেবিলে এনে বসানো হয় আরো দুজন তরুনী এবং দুই ব্যক্তিকে। তবে সকাল নাগাদ কমাণ্ডো অভিযানের আগেই তাদের বেরিয়ে যেতে দেয় জঙ্গিরা। হোলি আর্টিজান বেকারি এদিকে রাতে যখন গুলি করতে করতে সন্ত্রাসীরা রেস্তোরাঁয় ঢুকছিল, তখন দোতলার ফ্রিজ থেকে মাছ আনতে গিয়েছিলেন বাবুর্চি দেলোয়ার হোসেন। গুলির শব্দ পেয়ে তিনি আরো কয়েকজন সহকর্মীর সাথে দৌড়ে একটি বাথরুমে ঢোকেন। একটি বাথরুমে মোট ৯ জন। হামলাকারীরা সেটা টের পেয়ে বাথরুমটির দরজা বাইরে থেকে লাগিয়ে দেয়। ভোর পর্যন্ত ছোট্ট বাথরুমটিতে ঠাসাঠাসি করে কোনমতে প্রাণ রক্ষা করেন রেস্তোরার নয় কর্মী। এক পর্যায়ে তারা নিজেদের জামাকাপড় খুলে ফেলেন। তারপর অক্সিজেনের ঘাটতি তৈরি হলে ভোরে দরজা ভেঙে বেরিয়ে আসেন, তখনও সন্ত্রাসীদের দখলে রেস্তোরাঁ, বেরিয়ে তারা সামনে পড়েন হামলাকারীদের। মি. হোসেন বলছেন, ৯ জনের ৩ জনই ভয়ে দোতলা দিয়ে লাফিয়ে পাশের ভবনে চলে যায়। “আমাদের তিন জনকে ভেতরে নিয়ে যায়। ভেতরে দেখলাম অনেক রক্ত আর লাশ। সবাই ফ্লোরে পড়ে আছে”। হামলাকারীরা চারজন ছিল উল্লেখ করে মি. হোসেন বলেন, “খবরে ছয় জন, সাত জন, আট জন দেখায়। কিন্তু আসলে ওরা চার জন ছিল।” “তাদের হাতে বড় একটা অস্ত্র ছিল। ছোট পিস্তল ছিল একটা। আর একটা করে চাপাতি। তাতে রক্তের দাগ।” হোলি আর্টিজানে সকালে সেনা অভিযান এর কিছুক্ষণ পরেই প্যারা কমাণ্ডোদের অভিযান শুরু হয়। প্রাণ রক্ষার্থে আবারো লুকিয়ে পড়েন দেলোয়াররা। হামলাকারীদের ভাগ্যে কি ঘটেছে সেটা দেখার সুযোগ আর হয়নি তাদের। কিন্তু রেস্তোরাঁর সাইফুল নামে যে নিহত কর্মচারীকে জঙ্গি হিসেবে উল্লেখ করছে পুলিশ, সে জঙ্গি নয় বলে দাবী করছেন মি. হোসেন এবং তাকে রেস্তোরায় প্রবেশের সময়ে হামলাকারীরাই হত্যা করেছে বলে উল্লেখ করছেন তিনি। দেলোয়ার হোসেন ও শারমিনা পারভীন দুজনেই বলছেন হামলাকারীরা তাদেরকে ধর্ম সম্পর্কে নানা উপদেশ দিয়েছিল। শনিবার ভোরবেলায় দেলোয়ারকে কমান্ডোরা উদ্ধার করে পুলিশের হেফাজতে দেয়। রবিবার তিনি সেখান থেকে লক্ষীপুরের গ্রামের বাড়িতে ফিরে গেছেন। শারমিনা পারভীন ও তার সন্তানেরা পুলিশি হেফাজত থেকে বাসায় ফিরলেও এখনও ঢাকার গোয়েন্দা কার্যালয়ে রয়েছেন তার স্বামী হাসনাত করিম। এরই মধ্যে হলি আর্টিজান রেস্তোরার পাশের ভবনে থাকা এক কোরিয়ান নাগরিকের করা ভিডিওর সূত্র ধরে হাসনাত করিমকে নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা রহস্য। রহস্য তৈরি হয়েছে হামলাকারীদের সংখ্যা নিয়েও। শুক্রবার রাতে গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে যে জঙ্গী আক্রমণে বিদেশী নাগরিকসহ ২০ জন নিহত হয়, তার প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে সেই রাতের ঘটনাবলীর আরো নতুন বর্ণনা পাওয়া যাচ্ছে। +text: ভারতে গর্ভ ভাড়া দেওয়া একজন সারোগেট মা (ফাইল ছবি) আজ বুধবার ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দেশের নতুন সারোগেসি আইনে বাণিজ্যিকভাবে সারোগেসি করার কোনও অনুমতি দেওয়া হবে না। অর্থাৎ পয়সার বিনিময়ে সন্তান ধারণের জন্য গর্ভ ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে�� বিদেশি দম্পতি, প্রবাসী ভারতীয়, একক বাবা-মা, অবিবাহিত কিন্তু একসঙ্গে থাকেন এমন দম্পতি, সমকামী দম্পতি – এমন অনেকেই সারোগেসির জন্য এতদিন ভারতকে বেছে নিতেন – কিন্তু নতুন আইনে তাদের সে সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর ঘোষণা করেছেন, ‘‘বাণিজ্যিক সারোগেসি পুরোপুরি নিষিদ্ধ হবে। শুধুমাত্র নি:সন্তান দম্পতি – যারা মেডিক্যাল কারণে বাবা-মা হতে পারছেন না – একমাত্র তারাই সন্তানের জন্য কোনও নিকটাত্মীয়ের সাহায্য নিতে পারবেন।’’ সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্রিফ করতে গিয়ে মিস স্বরাজ আরও জানান, ‘‘যে নি:সন্তান দম্পতিদের বিয়ের পর অন্তত পাঁচ বছর কেটে গেছে তারাই এই অনুমতি পাবেন। ওই দম্পতির কোনও সন্তান থেকে থাকলে তারাও সারোগেসির অনুমতি পাবেন না।’’ ভারতে সাম্প্রতিক অতীতে শাহরুখ খান বা আমির খানের মতো বলিউড চিত্রতারকারা সারোগেসির সাহায্যে সন্তানের পিতা হয়েছেন – যদিও তারা আগে থেকেই স্বাভাবিক পদ্ধতিতে বাবা ছিলেন। শাহরুখ বা আমির খানের মতো তারকারা সারোগেসির সাহায্যে সন্তানের পিতা হয়েছেন তুষার কাপুরের মতো চিত্রতারকাও সারোগেসির সাহায্যে বাবা হয়ে নিজেকে সিঙ্গল ফাদার হিসেবে ঘোষণা করেছেন। নতুন আইন পাস হলে এরা কেউই এভাবে তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন না। মিস স্বরাজ কারও নাম না-নিয়েও এদিন বলেছেন, ‘‘সেলেব্রিটিরা অনেকেই সারোগেট বেবি নিচ্ছেন – যদিও তাদের আগে থেকেই হয়তো দুটো ছেলেমেয়ে আছে। তার পরেও তারা তৃতীয় সন্তান নিতে চাইছেন সারোগেসির মাধ্যমে – কারণ তাদের স্ত্রীরা গর্ভধারণের কষ্টটুকু করবেন না, সেই কাজটার জন্য তারা অন্য কাউকে ভাড়া করবেন!’’ যে নি:সন্তান দম্পতিরা কোনও নিকটাত্মীয়কে সারোগেসির জন্য ব্যবহার করতে অনুমতি পাবেন, তারা শুধু তার মেডিক্যাল খরচটুকু বহন করতে পারবেন। গর্ভধারণের জন্য কোনও ভাড়া দেওয়া চলবে না। তবে নিকটাত্মীয়-র সংজ্ঞা ঠিক কী হবে সেটা এখনও সরকার ঘোষণা করেনি। পার্লামেন্টের আগামী শীতকালীন অধিবেশনে যখন এই বিলটি পেশ করা হবে, তখনই এর বিস্তারিত জানা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বিদেশি নাগরিকরা যে ভারতে এসে কোনও মতেই সারোগেসি করানোর অনুমতি পাবেন না, সেটা সরকার চূড়ান্ত করে ফেলেছে। এমন কী প্রবাসী ভারতীয়রাও সেই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন। ভারতে মহিলাদের গ���্ভ ভাড়া করে সন্তান নেওয়ার যে পদ্ধতি বা ‘সারোগেসি’ ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, সেই পদ্ধতিকে প্রায় পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার জন্য নতুন আইন অনুমোদন করেছে সে দেশের সরকার। +text: ইমরান খান, পাকিস্তানের নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী। রোববার করাচিতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে আসা আড়াই লক্ষ মানুষ এখন করাচিতে শরণার্থী হিসেবে বসবাস করছেন। "৪০ বছর ধরে এরা এই শহরে আছেন। তাদের সন্তানরাও এই শহরেই বড় হচ্ছে," ইমরান খান বলেন, "কিন্তু তাদের নেই কোন পাসপোর্টে কিংবা কোন পরিচয়পত্র।" "এগুলো না থাকলে চাকরি হয়না, আর চাকরি হলেও তাদের বেতন হয় অর্ধেক।" করাচি শহরের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করে ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিক মি. খান বলেন, এসব শরণার্থীর জন্য শিক্ষা এবং চাকরির বাজার উন্মুক্ত করতে হবে। করাচি থেকে বিবিসি সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, পাকিস্তানে এখন ১৪ লক্ষ আফগান শরণার্থী বসবাস করছেন। টেলিভিশনে ইমরান খানের ভাষণ দেখছেন পাকিস্তানের ক'জন নাগরিক। আরও পড়তে পারেন: উঁচুপদের সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের সুপারিশ এশিয়া কাপ: তামিমের আবার ব্যাটিংয়ে নামা কতটা যুক্তিযুক্ত ছিল? এই মুহূর্তে ক্রিকেটের সেরা ব্যাটসম্যান কে? তাদের ৭৪%ই দ্বিতীয় বা তৃতীয় প্রজন্মের আফগান। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে বিপুল সংখ্যক শরণার্থী তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে চলে আসেন। পাশাপাশি বার্মা থেকেও প্রচুর শরণার্থী আসেন। মহানগরীর ১০৩টি মহল্লায় বাঙালী এবং বর্মী শরণার্থীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে বিবিসি সংবাদদাতা জানাচ্ছেন। কিন্তু নাগরিকত্ব কিংবা পরিচয়পত্রের অভাবে তাদের বেশিরভাগই দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন এবং নানা ধরনের সামাজিক নিপীড়নের শিকার হন। পাকিস্তান নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী, সে দেশের ভূখণ্ডে ১৯৫১ সালের পর জন্মগ্রহণকারী যে কেউ পাকিস্তানী নাগরিকত্বের অধিকারী। কিন্তু পাকিস্তানে বর্তমানে যারা সরকারি শরণার্থী কার্ড ব্যবহার করছেন তারা নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন না। যেসব উর্দুভাষী শরণার্থী দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে আটকা পড়ে রয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী অবশ্য তাদের ভবিষ্যতের ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেননি। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, তার সরকার ব���ংলাদেশ এবং আফগানিস্তানে থেকে আসা শরণার্থীদের পাকিস্তানের নাগরিকত্ব প্রদানের কথা বিবেচনা করছে। +text: জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় জামায়াত দল হিসাবে বা দাড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না । কিন্তু জামায়াতের নেতারা অন্য কোনো নিবন্ধিত দলের প্রতীকে বা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করতে পারবেন বলে কিছুদিন আগে এক বক্তব্যে নিশ্চিত করেন নির্বাচন কমিশন সচিব। জামায়াতের নির্বাচনী চিন্তা এবং পরিকল্পনা নিয়ে বিবিসি বাংলার সাথে কথা বলার সময় জামায়াত নেতা শফিকুর রহমানও তেমনটাই বলেছেন। 'জোটের সাথে সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচন' মি. রহমান বলেন, "আমরা বিশ দলীয় জোটের অংশ, যেটি এখন ২৩ দলে পরিণত হয়েছে। আমরা জোটের ভিত্তিতেই নির্বাচনে অংশ নেবো।" নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিবেচনায় জামায়াতের হাতে দুইটি পথ রয়েছে বলে মন্তব্য করেন মি. রহমান। "একটি হলো জোটের কোনো একটি নিবন্ধিত দলের মার্কা নিয়ে নির্বাচন করতে পারি অথবা স্বতন্ত্রভাবেও নির্বাচন করতে পারি।" তবে কীভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়া হবে তা এখনো দলগতভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলে জানান মি. রহমান। জামায়াতে ইসলামীর মোট কতজন জোটের প্রতীকে বা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করতে পারেন - এই প্রশ্নের জবাবে মি রহমান জানান তাদের অনুমান অনুযায়ী ৫০ থেকে ৬০ জন এবারের নির্বাচনে অংশ নেবেন। তবে মি. রহমান বলেন, জামায়াত থেকে কারা নির্বাচনে অংশ নেবেন তা জোটের দলগুলোর সমঝোতার ভিত্তিতেই নির্ধারিত হবে। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের লোগো "জোটের প্রধান শরিক দলের (বিএনপি) সাথে অতিসত্বর বৈঠক হবে আমাদের। ঐ বৈঠকে আমরা এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো এবং দলীয় ফোরামে এই বিষয়টি নিয়ে আলাপ আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবো।" ঐক্যফ্রন্টের আপত্তি: জামায়াতের অবস্থান কী? ঐক্যফ্রন্ট গঠনের সময় বিএনপি'র সাথে জামায়াতের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আপত্তি তোলে ঐক্যফ্রন্টের কয়েকজন নেতা। বিএনপি যেন জামায়াতের সংশ্লিষ্টতা ত্যাগ করে - এমন পরামর্শও দেয়া হয় তাদের। এরকম পরিস্থিতিতেও কোনো একটি আসনে ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষেই জামায়াতের নেতাকর্মীরা কাজ করবেন বলে নিশ্চিত করেন মি. রহমান। "একটি বৃহত্তর উদ্দেশ্যকে যদি সফল করতে হয় তাহলে সবাইকে বড় মনের পরিচয় দিতে হবে", বলেন মি. র���মান। একইভাবে যেসব আসনে জামায়াতের নেতারা প্রার্থীতা করবেন, সেসব আসনে ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা জামায়াতের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। নির্বাচনে নিজেদের প্রতীক ব্যবহার করতে না পারা অথবা যুদ্ধাপরাধের দায়ে দলের বেশ কয়েকজন নেতার সাজা কার্যকর হওয়ার কারণে দলের নির্বাচনী প্রচারাভিযান ও কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলে মনে করেন মি. রহমান। "প্রতিটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনেই আমরা স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করেছি এবং সেসব নির্বাচনে জনগণের সমর্থনের বিবেচনায় আমরা আশাবাদী যে দলীয় প্রতীক ছাড়া নির্বাচন করলেও বড় কোনে সমস্যা সৃষ্টি হবে না।" তবে দলের প্রথম সারির বেশ কয়েকজন নেতা যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত থাকায় দল বড় ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে বলে স্বীকার করেন মি. রহমান। তিনি বলেন, শীর্ষ নেতারা দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় দল যতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জামায়াতের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থানের কারণে। "কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে দেশের সকল শাখা কার্যালয় সরকার বন্ধ করে দিয়েছে এবং আমাদের কোনো কার্যক্রমই সরকার স্বস্তির সাথে সম্পাদন করতে দিচ্ছে না, যেটি আমাদের জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।" জামায়াত ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান বিবিসিকে বলেছেন, তাদের দলের নিবন্ধন বাতিল হলেও নির্বাচনের জন্য তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। +text: চীনা সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ওয়েইবোতে এই পোস্টে পাশাপাশি দুটি ছবি ব্যবহার করা হয়। একটিতে দেখা যাচ্ছে চীনে একটি রকেট উৎক্ষেপণ করা হচ্ছে। আর পাশের ছবিতে দেখা যায় ভারতে করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া মানুষের মরদেহ চিতায় দাহ করা হচ্ছে। এই ছবির নীচে লেখা ছিল: "চীনে জ্বালানো আগুন বনাম ভারতে জ্বালানো আগুন।" শনিবার বিকেলে এই পোস্টটি দেয়া হয়েছিল, কিন্তু পরে এটি ডিলিট করা হয়। বলা হচ্ছে এই পোস্টটি দেয়া হয়েছিল এমন এক অ্যাকাউন্ট থেকে, যেটি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সম্পর্কিত। পার্টির সেন্ট্রাল পলিটিক্যাল এন্ড লিগ্যাল এফেয়ার্স কমিশনের অ্যাকাউন্ট এটি। ওয়েইবোতে এই অ্যাকাউন্ট ফলো করে লাখ লাখ মানুষ। ওয়েইবো চীনের খুবই জনপ্রিয় এক মাইক্রোব্লগিং সাইট। তবে এই পোস্টটি নিয়ে বেশ বিতর্ক তৈরি হয়। এই পোস্টের স্ক্রিনশট ব্যবহার করে অনেকে এটিকে 'অসঙ্গত' বলে মন্তব্য করেন। কেউ লিখেছেন, "চীনের বরং উচিৎ ভারতের জন্য সহানুভূতি প্রকাশ করা।" চীনের একটি পত্রিকা গ্লোবাল টাইমসের প্রধান সম্পাদক হু শিজিন লিখেছেন, "এসময় মানবতাবাদের ব্যানারটিই উঁচুতে তুলে ধরুন, ভারতের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করুন এবং চীনা সমাজকে সুদৃঢ়ভাবে উচ্চতর নৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করান।" চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কোভিড-১৯ সংকট নিয়ে শোকবার্তা পাঠালেন, তার একদিন পর ওয়েইবোতে এই পোস্টটি প্রকাশ হয়। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুই দেশের সম্পর্কে সম্প্রতি কিছুটা উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। মিস্টার শি শোকবার্তায় বলেছিলেন, ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে এবং যে কোন অতিরিক্ত সাহায্য দিতে চীন প্রস্তুত। করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কা সামলাতে ভারত এখন হিমসিম খাচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে শয্যা এবং অক্সিজেনের তীব্র সংকট চলছে, তার মধ্যেই সেখানে রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। রবিবার ভারতে করোনাভাইরাসে ৩ হাজার ৬৮৯ জন মারা গেছে, যা মহামারি শুরু হওয়ার পর এযাবতকালের সর্বোচ্চ সংখ্যা। এর আগের দিন জানানো হয়েছিল, ভারতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নতুন করে চার লাখের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। সেটিও ছিল এক বিশ্ব রেকর্ড। কোন দেশে এক দিনে চার লাখের বেশি মানুষের আক্রান্ত হওয়ার এটাই প্রথম। আরও পড়ুন: ভারতে কোভিড সুনামি: বাংলাদেশ ও বাকি বিশ্বের জন্য অর্থ কী? নিহত চীনা সৈন্যদের 'কলঙ্ক' দেওয়ায় ব্লগার গ্রেফতার চীনের বিরুদ্ধে ভারতীয় নাগরিক অপহরণের অভিযোগ; উত্তেজনা বৃদ্ধি ভারতকে বাদ রেখে চীনের টিকা স্টোরেজ উদ্যোগে বাংলাদেশের সম্মতি ভারত যেভাবে করোনাভাইরাস সংকটের মোকাবেলা করছে, সেটি নিয়ে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সম্পর্কিত একটি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের পোস্টে বিদ্রূপ করার পর এ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। +text: ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের একটি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেন সাকিব আল হাসান ন্যাপিয়ারে কাল বাংলাদেশ সময় সকাল সাতটায় শুরু হবে এই ম্যাচটি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাটিতে সিরিজের পর আবারো সাকিব আল হাসানকে ছাড়া সিরিজ খেলতে নামছে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশ কখনো নিউজিল্যান্ডকে হারাতে পারেনি। ত��ে সাম্প্রতিক ফর্ম বলছে নিজেদের শেষ পাচঁ ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছে ৪টি, হেরেছে ১টি। নিউজিল্যান্ড জিতেছে ১টি, হেরেছে ৪টি ম্যাচ। সাকিবের পরিবর্তন হিসেবে বেশ কয়েকটি বিকল্পের নাম ঘোরাফেরা করছে, টিম ম্যানেজমেন্টের আভাস মোহাম্মদ মিথুন খেলতে পারেন আর লোয়ার অর্ডারে নামার সম্ভাবনা রয়েছে সাইফুদ্দিনের। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচের আগে সাংবাদিকের প্রথম প্রশ্নটাই সাকিব আল হাসানকে নিয়ে। আরো পড়ুন: যেভাবে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দলে ফিরলেন সাব্বির রহমান আইসিসি বর্ষসেরা কোহলি,ওয়ানডে দলে মুস্তাফিজ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সরাসরি নেই কেনো বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে বড় শক্তির জায়গা হয়ে উঠতে পারেন মুস্তাফিজুর রহমান নিউজিল্যান্ডের একজন সাংবাদিক বাংলাদেশের কোচ স্টিভ রোডসের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রাখেন সাকিব আল হাসানকে ছাড়া খেলা কতটা কঠিন। স্টিভ রোডস উত্তরে বলেন, "সাকিব খেলছেন না, সে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারদের একজন। সে আমাদের সাথে আসতে পারেনি, এটা আমাদের জন্য বড় ধাক্কা নি:সন্দেহে।" "সে আমাদের সাথেই আসেনি সে বিপিএলের ফাইনালে হাতে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে বিশ্রামে আছেন।" নিউজিল্যান্ডের মাটিতে খেলাটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ এবং বাস্তবতা মেনেই পরিকল্পনা করছেন বাংলাদেশের কোচ, "এটা একটা পাহাড়সম কাজ আমাদের জন্য, আমাদের অধিনায়ক মাশরাফিও এমনটা বলেছেন, নিউজিল্যান্ডে বাস্তবতা আমাদের আন্ডারডগই করে রাখবে।" "এটা বিশ্বকাপের প্রস্তুতি, আমাদের স্কোয়াডটা অভিজ্ঞ। এখানে আসাটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তাই পুরো সুযোগটা কাজে লাগাতে চাই আমরা," ওয়ানডে সিরিজকে বিশ্বকাপের দল গোছানোর বড় সুযোগ বলে মনে করেন মি: রোডস। আমিনুল ইসলাম বুলবুল কী বলছেন? "যেহেতু সিরিজে চলে গিয়েছে বাংলাদেশ, সাকিব এমন একজন অলরাউন্ডার যাকে যেকোনো দলই মিস করবে, তবে দলের মধ্যে রিপ্লেসমেন্ট আছেন এবং আমরা ভরসা করছি যে তারা পারফর্ম করবে," বলছিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তবে কন্ডিশনের কথা আলাদাভাবে বলেছেন বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান। "বিশ্বব্যাপী উইকেট ব্যাটিং সহায়ক হয়ে উঠছে, তাই কন্ডিশন তেমন বড় ব্যাপার নয়। মাঠের সাইজটা একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। যেহেতু সেখানে মাল্টিপারপাজ স্টেডিয়াম সেখানে মাঠের সাইজ কখনো বড় বা ছোট হয়।" মি: বুলবুল এই সফরটাকে বিশ্বকাপের জার্নির অংশ হিসেবে মনে করেন। "পঞ্চাশ ওভারের খেলায় বাংলাদেশ বেশ শক্তিশালী, এখন যে কোনো দলকেই হারাতে পারবে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ড বেশ শক্তিশালী ব্যাটিং দল, তারা পঞ্চাশ ওভারের খেলায় অ্যাডভানটেজ পাবে।" তবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে টি-টোয়েন্টি খেলার পর ওয়ানডে খেলতে গিয়ে খুব বেশি অসুবিধা হবার কথা নয় বলে মনে করেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। "সময়ের দূরত্বটা থাকে, নতুন টাইম জোন বা আবহাওয়া, কিন্তু আমাদের ক্রিকেটাররা বেশ পেশাদার, পেশাদারিত্ব ও অভিজ্ঞতা দিয়ে এই সমস্যাগুলো সামলে নিবেন ক্রিকেটাররা।" পরিসংখ্যান কী বলছে? নিউজিল্যান্ড বনাম বাংলাদেশ দ্বৈরথে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন সাকিব আল হাসান। ৩০.২৬ গড়ে সাকিব ২১ ইনিংসে ৫৭৫ রান তোলেন। দ্বিতীয় স্থানে আছেন তামিম ইকবাল ৫৪০ রান ও ২৭.৮৯ গড় নিয়ে। মুশফিকুর রহিম ২৮.৬৬ গড় নিয়ে ৫১৬ রান তুলেছেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। পরিসংখ্যান বলছে ওয়ানডে ফরম্যাটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ক্রিকেটার সাকিব বোলিংয়ে সাকিব আল হাসান ২১ ইনিংসে ৩৫টি উইকেট নিয়েছেন। এখানেও তিনিই সর্বোচ্চ। রুবেল হোসেন ২১টি ও মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা ১৭টি উইকেট নিয়েছেন। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: গরু নিয়ে সংঘর্ষে বিজিবির গুলিতে ৩ জন নিহত স্কুলের অনুষ্ঠান শিক্ষার্থীরাই করবে, ৩ মাস অন্তর নতুন ক্যাপ্টেন কুকুর বিড়ালকে একটানা বেধে রাখলে জেল বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড আগামীকাল বুধবার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে। +text: পাওনা পরিশোধ নিয়ে গ্রামীণফোন ও বিটিআরসির মধ্যে বেশ কিছুদিন যাবৎ টানাপোড়েন চলছে। দুপুরে রাজধানীর বিটিআরসির দপ্তরে গিয়ে গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল এ সম্পর্কিত পে-অর্ডার হস্তান্তর করে। যার নেতৃত্ত্ব দেন গ্রামীণফোনের পরিচালক ও হেড অব রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাত। এর ফলে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের এক দিন আগেই, বিটিআরসির নিরীক্ষায় দাবি করা সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা থেকে সমন্বয়যোগ্য এক হাজার কোটি টাকা জমা দেয়া হল আজ। গ্রামীণফোনের কর্মকর্তা হোসেন সাদাত বলেন, বিদ্যমান আইনের প্রতি শ্রদ্ধা থেকে এই টাকা জমা দিয়েছেন তারা। "আমাদের একটা আইনগত অবস্থান আছে। তবুও আমরা বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।" হোসেন সাদাত বলেন, "তবে আমাদের আইনগত অবস্থান অক্ষুন্ন রেখে আমরা অ্যাপিল ডিভিশনের আদেশ অনুযায়ী সমন্বয়যোগ্য এই টাকা বিটিআরসিতে জমা দিয়েছি।" ফেসবুকের ভেরিফায়েড পেইজে এক স্ট্যাটাসে টাকা পাওয়ার খবর নিশ্চিত করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বারও। নিজের স্ট্যাটাসে মোস্তফা জব্বার লিখেছেন, "সুখবরটা পেলামই। গ্রামীণফোন এক হাজার কোটি টাকা প্রদান করেছে।" গ্রামীণফোনের এই পদক্ষেপকে সঠিক ও ইতিবাচক বলে উল্লেখ করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী। "রাষ্ট্রের পাওনা এবং আদালতের নির্দেশ মান্য করা বাংলাদেশে যেসব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান আছে প্রত্যেকের জন্য অবশ্য পালনীয়। তাই বাংলাদেশে ব্যবসা করতে হলে আদালতের নির্দেশনা মানতে হবে, এটাই তো স্বাভাবিক।" এর আগে এক বিবৃতে গ্রামীণফোন জানায়, রবিবার তারা আদালতের নির্দেশনা মেনে বিটিআরসি-কে এক হাজার কোটি টাকা দেবে তারা। এসব পদক্ষেপের মধ্যে আছে অনাপত্তিপত্র না দেয়া, লাইসেন্স বাতিলের বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ, নম্বর সিরিজ রিসাইকেল করার অনুমোদন না দেয়া এবং প্রতিষ্ঠানটিতে একজন প্রশাসক নিয়োগেরও হুমকি দেয়া। তবে আজকের এই পদক্ষেপের পর এ ধরণের কঠোরতায় শিথিল করা বা কোন পরিবর্তন আসবে কিনা এমন প্রশ্নে বিটিআরসির ভাইস-চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র বলেন, বিষয়টি এখনো বিচারাধীন রয়েছে। তাই এ ক্ষেত্রে আদালতের সিদ্ধান্তই মেনে চলবেন তারা। "তারা টাকা দিয়েছে। এই ক্ষেত্রে কোর্টে আগামীকাল একটা শুনানি হবে। এতে যে নির্দেশনা আসবে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে," তিনি বলেন। টেলিযোগাযোগ কর্তৃপক্ষ বিটিআরসির দাবি, গ্রামীনফোন এবং রবি, এই দুইটি টেলিকম কোম্পানির কাছে ২০ বছরে সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে সংস্থাটির। গ্রামীণফোন বাংলাদেশে এই মুহূর্তে সবচাইতে পুরনো এবং বৃহত্তম মোবাইল ফোন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের কাছে পাওনা ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি। যদিও মোবাইল কোম্পানি দুটো বলেছে, টাকার অংক নিয়ে তাদের আপত্তি রয়েছে। বিটিআরসির সাথে দ্বন্দ্ব সালিশের মাধ্যমে সমাধান করতে চায় গ্রামীণফোন এরকম প্রেক্ষাপটে গত বৃহস্পতিবার গ্রামীণফোনকে সোমবারের মধ্যে এক হাজার কোটি টাকা পরিশোধের আদেশ দেয় সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। সময়সীমা শেষ হওয়ার একদিন আগেই, অর্থাৎ রবিবারের মধ্যে গ্রামীণফোন এই পরিমান অর্থ বিটিআরসিকে দেবে বলে জানায়। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশি টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিটিআরসি-কে এক হাজার কোটি টাকা দিয়েছে মোবাইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন। +text: ফেসবুকে প্রকাশ করা আবরার ফাহাদের একটি সেলফি কথাগুলো বলছিলেন নিহত বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ একজন। আতংকিত এই ছাত্রটি নিজের নাম পরিচয় প্রকাশে একেবারেই রাজি নন। এটা ক্যাম্পাসের নৈমিত্তিক ঘটনা। তাই এ ব্যাপারে ততটা গুরুত্ব দেইনি, বলছিলেন তিনি। কিন্তু রাত ৩ টার দিকে তিনি জানতে পারেন আবরার কে হত্যা করে একতলা এবং দোতলার সিঁড়ির মাঝামাঝি ফেলে রাখা হয়েছে। তিনি এসময় নানা জনের সাথে কথা বলে জানতে পারেন, আবরারকে দুই-দফা দুটি রুমে নিয়ে গিয়ে পেটানো হয়েছে। প্রথমে ২০১১ নম্বর রুমে, পরে ২০০৫ নম্বর রুমে। বিবিসিকে বলছিলেন তিনি। "সেই সময় আমি ঘটনা স্থলে যাই। দেখি বুয়েট মেডিকেলের ডাক্তার এসেছেন এবং আবরারকে দেখে মৃত বলে ঘোষণা করছেন"। সিঁড়ির কাছের জায়গাটি ঘিরে রেখেছে ছাত্রলীগের ছেলেরা। সাধারণ ছাত্রদের সেখানে জড়ো হতে বাধা দিচ্ছিলো তারা। "আমরা তখন হলের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রভোষ্ট কে বলি, স্যার আপনার সাথে কথা আছে। স্যার কে নিয়ে ১০১১ রুমে আসি এবং দরজা বন্ধ করে স্যার কে বলি, স্যার এখানে কিছু হচ্ছে, যেটা স্বাভাবিক না। স্যার আমাদের তখন বলেন, তোমরা নিজেরা একত্রিত হও"। "এর মধ্যে ছাত্রলীগের ছেলেরা খবর পেয়ে আমাদের দরজা বাইরে থেকে ধাক্কা দিতে থাকে। তারা ভোর ৫টা পর্যন্ত সেখানেই ছিল। তারপর তারা চলে গেলে আমরা ফেসবুকে আমাদের বুয়েটের সব হলের ছাত্রদের সাথে যোগাযোগ করি এবং একত্রিত হতে থাকি"। আবরার হত্যায় বিক্ষোভ হচ্ছে বুয়েটে "ততক্ষণে ৬টা বেজে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ বিষয়ের পরিচালক মিজানুর রহমান এলে তাকে আমরা একটা কথাই বলি যে, এই ঘটনার তদন্ত চাই। কিন্তু তিনি আমাদের হতাশ করেন"। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ছাত্রের বয়ান: ২০০৫ নম্বর রুমে আবরার কে আমি দেখি। তখন সে বেঁচে ছিল। তখন পুলিশ চলে এসেছে। আমরা পুলিশের কাছে যাই, পুলিশ বলে ওকে (আবরারকে) নিচে নামানোর ব্যবস্থা করা হোক, যেন হাসপাতাল ��া থানায় নেয়া হয়। এটা পুলিশের ভাষ্য। আমি কয়েকজন জুনিয়রকে নিয়ে আবরারকে কোলে করে নিয়ে আসার চেষ্টা করছিলাম। সময়টা রাত ২ থেকে ৩ টার মধ্যে। সে তখন জীবিত ছিল এবং আমাদের বলছিল, 'আমাকে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাও'। বিশেষ করে বিশেষায়িত কোন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সে। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া এম্বুলেন্স আসতে দেরি হচ্ছিল। পুলিশ ছিল। যেকোন কারণেই হোক আমার আর সেখানে থাকা সম্ভব হয়নি। পুলিশ যা বলছে: চকবাজার থানার ওসি সোহরাব হোসেন ঐ রাতের ঘটনা সম্পর্কে বলছিলেন, "আমরা প্রথম সংবাদ পাই আমাদের ঐ এলাকায় যে মোবাইল পেট্রোল পার্টি আছে তাদের কাছে। তারা থানায় ফোন করে জানায়, বুয়েটে গণ্ডগোল হচ্ছে। তখন পুলিশের এই দলটি বুয়েটে যায়"। "রাত সোয়া দুইটার দিকে পুলিশের একটা দল যায় হলে। কিন্তু তাদের কে ভিতরে ঢুকতে দেয় নি। ছাত্রলীগের কিছু ছেলে এসে বলে এখন ঢুকতে পারবেন না, কারণ আমাদের হল কর্তৃপক্ষ এখন কেউ আসেনি"। তিনি বলছিলেন, পুলিশের এই দলটি ৩টা পর্যন্ত সেখানে ছিল তারপর সেখান থেকে চলে আসে। এরপর বুয়েট ছাত্রলীগের জেনারেল সেক্রেটারি রাসেল (বর্তমানে বহিষ্কৃত) আবার থানায় ফোন করে এবং জানায় এখন তাদের হলের প্রভোষ্ট এসেছে। এখন আপনারা আসতে পারেন। মি. হোসেন বলছিলেন, ৪ টার দিকে আবারো পুলিশ সেখানে যায়। প্রভোষ্ট, ডাক্তার সেখানে সবাই উপস্থিত ছিল। ডাক্তার সেখানে আবরারকে মৃত ঘোষণা করে। এরপর সেখানকার প্রক্রিয়া শেষ করে মরদেহ ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য প্রাঙ্গণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা বিক্ষোভ করছে তিনি আরো জানান, আবরারের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে আবরারের মৃতদেহে অনেক আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। সোমবারই পুলিশ বলেছিল, আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কিছু গণমাধ্যমে খবরে, পুলিশের দুই দফা সেখানে যাওয়া এবং তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। মি. হোসেন বলছিলেন, আমরা খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছি। কিন্তু অনুমতি ছাড়া আমরা হলের মধ্যে ঢুকতে পারি না। সেক্ষেত্রে আমরা আমাদের দায়িত্বের কোন গাফিলতি দেখতে পাচ্ছি না। আবরার হত্যায় এ পর্যন্ত ১৩জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের সবাইকেই রিমান্ডে নেয়া জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বি���িসি বাংলায় আরো পড়ুন: সেক্স ভিডিওর 'মোটা মেয়েটি' যখন আইন তৈরির অনুপ্রেরণা ভারতের রেডার সিস্টেম দিয়ে নিরাপত্তা আর নজরদারি রবিবার দিবাগত রাত ১ টার দিকে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরারের কক্ষ ১০১১ নম্বর রুমে গিয়ে দেখি সে সেখানে নেই। পরে জানতে পারি রাত সোয়া আটটার দিকে তাকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল ছাত্রলীগের ছেলেরা। +text: পাকিস্তান এবং আমেরিকা মিত্র দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল পাকিস্তানে তৎপর জঙ্গী গোষ্ঠী আফগান তালেবান এবং হাক্কানী মিশনের তৎপরতা বন্ধে দেশটির ব্যর্থতার ফলেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়। আভাস মিলেছিল এ বছরের একেবারের প্রথম দিনেই, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি টুইট বার্তায়। এবার এলো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। নিজদেশে জঙ্গী তৎপরতা বন্ধে ব্যর্থ হওয়ায় এবার প্রায় সবধরনের মার্কিন নিরাপত্তা সহায়তা বন্ধ করা হলো। .স্টেট ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জঙ্গি গ্রুপ হাক্কানী নেটওয়ার্ক এবং আফগান তালেবান গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পাকিস্তানের ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র হিদার নুরেট সংবাদ মাধ্যমকে বিষয়টির ব্যাখ্যা দেন। মিজ নুরেট বলছেন যে, " আজ নিশ্চিত করে বলতে চাই যে আমরা পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা, দুঃখিত- নিরাপত্তা সহায়তা বন্ধ করছি। যতদিন পর্যন্ত না দেশটির সরকার তাদের দেশে তৎপর আফগান তালেবান গোষ্ঠী ও হাক্কানী গ্রুপের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেবে। তারা এই অঞ্চলটিকে অস্থিতিশীল করছে এবং মার্কিন নাগরিকদের টার্গেট করে আসছে। এ জন্যেই পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রে নিরাপত্তা সহায়তা বন্ধ রাখা হবে।" যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তে মিত্র হিসেবে পরিচিত পাকিস্তানের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বড় আঘাত। তবে আফগানিস্তান এবং ভারত প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপের। কেবল মাত্র চীন এ বিষয়ে পাকিস্তানের পক্ষে রয়েছে। এর আগে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতারণার আশ্রয়, জঙ্গী দমনে ব্যর্থতা ও তালেবানদের আশ্রয় দেবার অভিযোগে সাহায্য বন্ধ করে দেবার হুমকি দিয়ে টুইট করেছিলেন মিস্টার ট্রাম্প। সেখানে তিনি লিখেছিলেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ১৫ বছর ধরে বোকার মতো পাকিস্তানে ৩৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ সাহায্য দিয়ে এসেছে। যার বিনিময়ে তারা কিছুই পায়��ি। অবশ্য এর আগেই ট্রাম্প প্রশাসন পাকিস্তানে ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তা পাঠাতে দেরী হবে বলে জানিয়েছিল। যদিও স্টেট ডিপার্টমেন্টের বক্তব্যে মিজ নুরেট ডলারের হিসেবে ঠিক কত পরিমাণ নিরাপত্তা সহায়তা বন্ধ রাখা হচ্ছে তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেন নি। জঙ্গীদের স্বর্গরাজ্য বলে টুইটে ট্রাম্পের কটাক্ষের পর এবার পাকিস্তানে মার্কিন নিরাপত্তা সহায়তা বন্ধের ঘোষণা এলো। এ নিয়ে দুই দেশের কয়েকদিনের বাক বিতণ্ডার পর স্টেট ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে সহায়তা বন্ধের বিষয় নিশ্চিত করা হয়। +text: বিভিন্ন পদ্ধতিতে পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইটের ব্যবহার কমিয়ে আনার চেষ্টা করা যেতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। হাইকোর্টের ঐ বিবৃতিতে বিটিআরসি'র কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে কেন ছয় মাসের পর আরো দীর্ঘ সময়ের জন্য পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইট বন্ধ রাখা হবে না। বিটিআরসি'র চেয়ারম্যান জহিরুল হক বিবিসিকে নিশ্চিত করেন যে তারা হাই কোর্টের আদেশ সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। মি. হক বলেন, "আমাদের আইনি বিভাগ এবিষয়ে তৎপর রয়েছে, আদেশটা আমাদের হাতে এসে পৌঁছালেই আমার এবিষয়ে ব্যবস্থা নেবো।" হাইকোর্টের এই নির্দেশনার বাস্তবায়ন কতটা কার্যকরভাবে করা সম্ভব সেই প্রশ্ন করা হলে জহুরুল হক বলেন, "৮০ ভাগ পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইট বন্ধ করতে পারবো বলে আমাদের প্রত্যাশা রয়েছে।" তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য ও প্রযুক্তি ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক বি.এম. মইনুল হোসেন মনে করেন, ৮০ ভাগ পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইট বন্ধ করা প্রায় অসম্ভব একটি কাজ। "বিশ্বে হাজার হাজার পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইট রয়েছে, সব ওয়েবসাইট বন্ধ করা, এমনকি ৮০ ভাগ বন্ধ করাও টেকনিক্যালি অসম্ভব একটি কাজ", বলেন মি. হোসেন। তবে বিভিন্ন পদ্ধতিতে পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইটের ব্যবহার কমিয়ে আনার চেষ্টা করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন মি. হোসেন। আরো পড়ুন: পর্ণ সাইট: তারানা হালিম বলছেন তালিকা হবে না পর্ন তারকার নামে বইমেলায় স্টল, বিপাকে তিন কিশোর পর্ন তারকার মুখ বন্ধে টাকা খরচের কথা স্বীকার ট্রাম্পের সানি লিওনের পিছু ছাড়ছে না পর্ন-তারকার অতীত বাংলাদেশে জনপ্রিয় সাইট বন্ধ করা মইনুল হোসেন জানান, সব পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইট বন্ধ করা না গেলেও বাংলাদেশ থেকে যেই সাইটগুলো বেশি ব্রাউজ হয় সেগুলোর তালিকা বের করে সেগুলো বন্ধ করা ��েতে পারে। "বাংলাদেশে কোন পর্ন সাইটগুলো বেশি ব্রাউজ হয়, সেই তালিকা থেকে পাওয়া সাইটগুলো বন্ধ করা যেতে পারে।" জনপ্রিয় সাইটগুলো বন্ধ করা গেলে মানুষ নিরুৎসাহিত হয়ে পর্ন ওয়েবসাইট ব্যবহার করা কমিয়ে দিতে পারে বলে ধারণা প্রকাশ করেন মি. হোসেন। তবে এভাবে পর্ন ব্যবহারের হার এবং ওয়েবসাইটের গতি কমলেও মি. হোসেন নিশ্চিত করেন তালিকার বাইরের অসংখ্য পর্ন ওয়েবসাইট তখনও ব্যবহার করা সম্ভব থাকবে। পর্নোগ্রাফি আসক্তি কমানোর লক্ষ্যে আগামী ছয় মাসের জন্য সব ধরণের পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইট বন্ধ করার নির্দেশনা দিয়েছে হাইকোর্ট। ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর নজরদারি কোনো ওয়েবসাইট বন্ধ করতে হলে ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঐ ওয়েবসাইটের ঠিকানা জানিয়ে নির্দেশনা দেয়া হয় যেন সেসব ওয়েবসাইট বন্ধ করা হয়। মি. মইনুল হোসেন জানান, "ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে নির্দেশনা পাঠানোর ওপর নিয়মিত অনুসন্ধান করা যেতে পারে যে তারা নির্দেশনা সঠিকভাবে মেনে ওয়েবসাইট বন্ধ রেখেছে কি না।" তবে মি. হোসেন আশঙ্কা প্রকাশ করেন, প্রযুক্তিগত জ্ঞান যাদের রয়েছে, তারা চাইলে যে কোনো নিষিদ্ধ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারবেন। "সরকার কোনো একটি ওয়েবসাইট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়ার পরও সাধারণ মানুষ বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে ঐ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেছে - এমন ঘটনা দেশে এর আগেও অনেকবার ঘটেছে।" দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা মি. হোসেন বলেন, হাজার হাজার পর্ন ওয়েবসাইটের তালিকা থেকে কয়েকটা ওয়েবসাইট বন্ধ করা কার্যত অসম্ভব। "তবে বাংলাদেশ থেকে কোন কোন পর্ন ওয়েবসাইট বেশি ব্যবহৃত হয়, সেই তালিকা কিছুদিন পরপর হালনাগাদ করে এবং নতুন করে তৈরি করে নিয়মিতভাবে ওয়েবসাইট ব্লক করা যেতে পারে।" অর্থাৎ প্রথম দফায় তালিকা তৈরি করে সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু ওয়েবসাইট বন্ধ করার কিছুদিন পর আবারো তালিকা তৈরি করে সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্ন ওয়েবসাইটের দ্বিতীয় তালিকা তৈরি করা। এভাবে নিয়মিত বিরতিতে তালিকা তৈরি করে ওয়েবসাইট ব্লক করলে সবচেয়ে জনপ্রিয় অনেকগুলো ওয়েবসাইট বন্ধ করা সম্ভব হতে পারে বলে মন্তব্য করেন মি. হোসেন। তবে মি. মইনুল হোসেনের মতে, পর্নোগ্রাফি আসক্তি একটি সামাজিক ব্যাধি। কাজেই প্রযুক্তিগতভাবে এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা না করে সামাজিকভাবে এট��� মোকাবেলা করা উচিত। আগামী ছয় মাসের জন্য বাংলাদেশে সকল পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইট বন্ধ করতে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ 'বিটিআরসি'কে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশের হাইকোর্ট। +text: টিকা নেয়ার পরেও নির্দিষ্ট সময়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়, বলছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অনেকের মধ্যে একটি বিভ্রান্তি রয়েছে কারণ, এই টিকা নেয়ার পরেও কারও কারও কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হচ্ছে। সেই ভুল ভাঙ্গতে এক স্বাস্থ্য সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, করোনাভাইরাসের টিকা নেয়ার কারণে কারও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া বা পজিটিভ শনাক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু করোনাভাইরাসের দুইটি ডোজ শেষ হওয়ার পরেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হতে আরো দুই সপ্তাহ সময় লাগে। সেই পর্যন্ত সতর্ক না থাকলে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়। ''চলমান কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমে ব্যবহৃত কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ গ্রহণের ন্যূনতম ২ সপ্তাহ পর থেকে সর্বোচ্চ প্রতিরোধ সক্ষমতা তৈরি হয়,'' বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে। ''তাই এই সময়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে।'' এই কারণে ভ্যাকসিন গ্রহণের পূর্বে ও পরেও মাস্ক ব্যবহারসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আরও পড়ুন: কোভিড-১৯: বাংলাদেশে টিকায় আগ্রহ বাড়ার কয়েকটি কারণ শর্ত শিথিল করলো সরকার, আরো যারা ভ্যাকসিন নিতে পারবেন করোনা ভাইরাসের টিকা নিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা ভাইরাস: যেসব কারণে গরমকালে সংক্রমণ বাড়তে পারে বাংলাদেশে শনিবার দুপুর পর্যন্ত ৩৫ লাখ ৮৪ হাজার ১৬৯ জন করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছেন। টিকা নেয়ার জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছেন ৪৮ লাখ ৯৩ হাজার ৪৫৪ জন। বাংলাদেশে অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত কোভিশিল্ড টিকা দেয়া হচ্ছে, যা উৎপাদন করছে ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউট। বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসের নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮৪০ জন। এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট আক্রান্ত হলেন ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৭২৪ জন। প্রতি ১০০ জনের নমুনা পরীক্ষায় চারজন নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছে। কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায��� মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ৮ হাজার ৪৫৪ জনের। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে বাংলাদেশ কেন ইথিওপিয়ার চেয়েও পিছিয়ে বিবিসির সংবাদদাতার চোখে মিয়ানমারের তরুণদের বিক্ষোভ কার্টুনিস্ট কবির কিশোরকে ভয়াবহ নির্যাতনের বর্ণনা 'ওনাকে কোথায় নির্যাতন করলো' - স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রশ্ন করোনাভাইরাসের টিকা নেয়ার কারণে কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ পরীক্ষায় ''পজিটিভ'' হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। +text: স্টেডিয়ামে জাপান সমর্থক। গতকাল মঙ্গলবার রাতেও রাশিয়ায় মাঠের একই অবস্থা ছিল জাপান ও কলম্বিয়ার ম্যাচের পর। জাপান সমর্থকদের আনন্দ উল্লাস করার কারণ ছিল যেহেতু তারা ২-১ গোলে জিতেছে। দক্ষিণ আমেরিকার কোন দলের বিরুদ্ধে এটাই জাপানের প্রথম জয়। খেলার মাঠে কলম্বিয়াকে ধরাশায়ী করার পর জাপানের সমর্থকরা কিন্তু গ্যালারিতে শুধু আনন্দ উল্লাসেই মেতে থাকেনি, বরং তারা গ্যালারি পরিষ্কার করতে ব্যস্ত হয়ে যান। স্টেডিয়ামের ভেতরে দর্শকদের সারিতে ও আসনে যেসব আবর্জনা ছিল সেগুলো তারা নিজেরাই পরিষ্কার করতে শুরু করে। এসময় তাদের হাতে ছিল ময়লা কুড়িয়ে নেওয়ার বড় বড় ব্যাগ। খেলা শেষ হওয়ার পর তারা ঘুরে ঘুরে ময়লা আবর্জনা এসব ব্যাগে ভরে স্টেডিয়াম পরিষ্কার করতে থাকেন। তাদের কথা হলো- "ভেতরে ঢুকে আমরা স্টেডিয়ামটিকে যে অবস্থায় পেয়েছি, এটিকে আমরা সেরকমই রেখে যেতে চাই।" জাপানি ফুটবল সমর্থকরা যে এধরনের কাজ এই প্রথম করেছে তা নয়। এর আগেও বিভিন্ন খেলার পরে তারা দল বেঁধে স্টেডিয়াম পরিষ্কার করেছে। আরো পড়তে পারেন: সেনেগালের যে গোলটি নিয়ে বিতর্ক বিশ্বকাপ ২০১৮: রাশিয়ার জন্মহার বাড়াবে ফুটবল? রাশিয়ায় এখন পর্যন্ত নজর কেড়েছেন কারা 'হিজাবের নিচে বই খাতাপত্র লুকিয়ে রাখতাম' ঠাণ্ডা থাকতে গিয়ে বাড়ছে পৃথিবীর তাপমাত্রা "এটা তো শুধু ফুটবল সংস্কৃতির অংশ নয়, এটা জাপানি সংস্কৃতিরই অংশ," বিবিসিকে একথা বলেছেন ফুটবল সাংবাদিক স্কট ম্যাকিনটার, যিনি জাপানেই থাকেন। বিশ্বকাপের খবর সংগ্রহ করতে তিনি এখন রাশিয়ায়। গতকালের ময়লা পরিষ্কারের অভিযান দেখে তিনি মোটেও বিস্মিত হননি। "অনেকেই বলে থাকেন যে ফুটবল হচ্ছে সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি। অর্থাৎ ফুটবল দেখে বোঝা যায় কার সংস্কৃতি কেম��। জাপানি সমাজের একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে- সবকিছু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন আছে সেটা নিশ্চিত করা। সব ধরনের খেলাধুলাতেই দর্শকরা একই আচরণ করে থাকে। ফুটবলেও একই রকম," বলেন তিনি। শৈশব থেকেই এই অভ্যাস সেনেগালের সমর্থকদেরকেও এবারের বিশ্বকাপে স্টেডিয়াম পরিষ্কার করতে দেখা গেছে। তবে জাপানিরাই এই কাজটি শুরু করেছিল এবং এজন্যে তারা আজ বিখ্যাত। বিদেশি যেসব দর্শক সেদিন খেলা দেখতে স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন তাদের অনেকেই জাপানিদের এই উদ্যোগে সেদিন অবাক হয়েছেন। "তাদের কেউ কেউ হয়তো আসনের উপর খাবারের প্যাকেট কিম্বা বোতল রেখে যেতে পারেন। তখন জাপানিরা পেছন থেকে তাদের কাঁধে টোকা মেরে বলবে তাদের দায়িত্ব এসব আবর্জনা পরিষ্কার করা কিম্বা বাড়িতে নিয়ে যাওয়া," বলেন মি. ম্যাকিনটার। জাপানিদের আনন্দ উল্লাস। এই অভ্যাস জাপানিদের মধ্যে গড়ে উঠে তাদের শৈশব থেকেই। "স্কুলে ছেলেমেয়েদেরকে যেসব আচরণ শেখানো হয়, স্টেডিয়ামে তার কিছুটা অংশ আমরা দেখতে পাই। জাপানের ছোট ছোট শিক্ষার্থীরাই তাদের স্কুলে ময়লা পরিষ্কার করে থাকে," বলেন ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক স্কট নর্থ। "শিশু বয়স থেকে বারবার এই কাজটির উপর জোর দেওয়ার কারণে এটি বেশিরভাগ লোকেরই আচরণের ভেতরে ঢুকে যায়," বলেন তিনি। "আবর্জনা পরিষ্কার করা এবং এসবের রিসাইক্লিং-এর ব্যাপারে জাপানিরা অত্যন্ত সচেতন। বিশ্বকাপেও জাপানিরা এই কাজটা অত্যন্ত গর্বের সাথে করেছে। সোশাল মিডিয়াতে এসব ছবি, ভিডিও পোস্ট করে তারা তাদের সেই গর্ব বাকি বিশ্বের সবার সাথে শেয়ার করে নিয়েছে," ব্যাখ্যা করেন অধ্যাপক নর্থ। সাংবাদিক স্কট ম্যাকিনটার বলেন, "বিশ্বকাপ দেখতে বিভিন্ন দেশের মানুষ একটা জায়গায় জড়ো হয়- এটা একটা দারুণ ঘটনা। এখান থেকে একজন মানুষ আরেকজনের কাছে এরকম অনেক কিছু শিখতে পারে, বিনিময় করতে পারে তাদের চিন্তাভাবনা এবং অভিজ্ঞতাও। এটাই হলো ফুটবলের সৌন্দর্য।" বিশ্বকাপে উত্তেজনাপূর্ণ কোন ম্যাচ শেষ হওয়ার পর গ্যালারির আসনগুলোতে সাধারণত উচ্ছিষ্ট খাবার, গ্লাস, কাপ, বোতল, প্লাস্টিক ও কাগজের ঠোঙ্গা বা প্যাকেট ইত্যাদি আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকে। +text: বসন্তের শুরুতে চমৎকার আবহাওয়ায় এত ধূলা কোত্থেকে এলো তা অনেককেই অবাক করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধূলা এসেছে আফ্রিকা মহাদেশের সাহার��� মরুভূমি থেকে। ‘সাহারা ডাস্ট’ নামে পরিচিত এই মিহি বালি যখন বৃষ্টির সঙ্গে মাটিতে এসে পড়ে, বিশেষজ্ঞরা তাকে বলেন ‘ডার্টি রেইন’। সাহারা মরুভূমি থেকে কয়েক হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে এই বালি কিভাবে এসে পৌঁছালো ইংল্যান্ডের মাটিতে? ধূলি ধুসর লন্ডনের আকাশ ব্রিটেনের আবহাওয়া দফতরের একজন বিশেষজ্ঞ এন্ড্রু সিবলে বলেন, প্রচন্ড বাতাসে সাহারা মরুভূমি থেকে মিহি বালি এবং ধূলি কণা আকাশের অনেক উপরে উঠে যেতে পারে। এরপর জেট প্রবাহের সঙ্গে এই ধূলা-বালি হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে পৃথিবীর নানা দিকেই ছড়িয়ে যেতে পারে। “এই ধূলা যখন বৃষ্টির ফোঁটায় আটকে যায় তখন এগুলো মাটিতে নেমে আসে। এটাকেই আমরা বলি ‘ডার্টি রেইন’।” বায়ু দূষণ এই ‘সাহারা ডাস্টের’ কারণে ইংল্যান্ড জুড়ে বায়ু দূষণের মাত্রা মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে এবং এজন্য ইংল্যান্ডে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ব্রিটেনের পরিবেশ ও খাদ্য দফতর ‘ডেফরা’ জানিয়েছে ইংল্যান্ডে বায়ু দূষণ মাত্রা এখন পাঁচে (মধ্যম পর্যায়ে) পৌঁছেছে, তবে তা বুধবার পরের দিকে তা আট-নয় পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। বয়স্ক লোকজন এবং আ্যজমা ও হৃদরোগে আক্রান্তদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ইংল্যান্ডের বহু মানুষ রোববার ঘুম থেকে থেকে উঠে দেখেছেন তাদের গাড়ি ধূলায় ঢেকে আছে। তার ওপর ঝরে পড়া বৃষ্টির ছোপ ছোপ দাগ। +text: নমুনা সঠিকভাবে সংগ্রহ করা হচ্ছে কিনা তার উপরে অনেক কিছু নির্ভর করে। ২৯শে অগাস্ট প্রকাশিত হওয়া প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশের গণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বলা হয় যে কোভিড-১৯ টেস্টের জন্য ফি নির্ধারণ করার পর নিয়মিত হওয়া পরীক্ষার সংখ্যায় বড় ধরণের তারতম্য লক্ষ্য করা গেছে। বাংলাদেশে শুরুর দিকে বেশ কয়েকমাস বিনামূল্যে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হলেও জুন মাসের শেষদিকে বাংলাদেশ সরকার কোভিড টেস্টের মূল্য নির্ধারণ করে। বুথে বা হাসপাতালে নমুনা দেয়ার ক্ষেত্রে ফি ধরা হয় ২০০ টাকা এবং বাসা থেকে নমুনা সংগ্রহ করার ফি নির্ধারণ করা হয় ৫০০ টাকা। তবে কিছুদিন আগে এই ফি কমিয়ে যথাক্রমে ১০০ টাকা এবং ৩০০ টাকা করা হয়। প্রাইভেট হাসপাতালে প্রতিটি পরীক্ষার ফি ৩৫০০ টাকা। টেস্টের জন্য ফি নির্ধারণ করার পর থেকে টেস্ট করানোর হার নেমে দাঁড়িয়েছে প্রতি হাজার জনে দিনে ০.৮টি টেস্টে। আর অগাস্ট মাস��� এই হার নেমে দাঁড়িয়েছে প্রতি হাজার জনে ০.০৬টি টেস্টে। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ১২ থেকে ১৫ হাজার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। আরো পড়তে পারেন: নাক বা গলা থেকে নমুনা সংগ্রহ কি মস্তিষ্কের ক্ষতি করে? করোনাভাইরাস: ‘ল্যাবে নমুনা পৌঁছানোর আগেই নেগেটিভ রিপোর্ট’ অনুমতি পাচ্ছে না 'অ্যান্টিবডি টেস্ট', আসছে 'অ্যান্টিজেন টেস্ট' করোনাভাইরাসের পরীক্ষা কম হওয়ার যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের বাংলাদেশের গণস্বাস্থ্য নিয়ে গবেষণা করা একটি প্রতিষ্ঠান এমিনেন্সের প্রধান শামীম তালুকদার ল্যান্সেটকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেছেন যে করোনাভাইরাস মহামারি বাংলাদেশের 'অনৈতিক' স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চিত্র উন্মোচন করে দিয়েছে। তিনি বলেন, "মহামারির শুরু থেকেই সরকার চেয়েছে কোভিড-১৯ এর পরীক্ষার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের অধীনে রাখতে।" "শুরুর দিকে বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরীক্ষা করার অনুমতিই দেয়া হয়নি। আর এখন সরকারি প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা করাতে হলেও ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। এর অর্থ হল দরিদ্রদের কথা মাথায়ই রাখা হয়নি।" ল্যান্সেটকে শামীম তালুকদার বলেন যে তিনি ঢাকার একাধিক কবরস্থান ঘুরে দেখেছেন, যেসব জায়গার তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা মন্তব্য করেছেন যে কোভিড-১৯ এ হওয়া মৃত্যুর সংখ্যা আনুষ্ঠানিক পরিসংখ্যানে প্রকাশিত সংখ্যার চেয়ে 'চারগুণ বেশি।' মি. তালুকদার মন্তব্য করেন অনেক মানুষ কোভিড-১৯ এ মারা গেলেও তাদের পরীক্ষা করা হয়নি, আবার অনেকে পরীক্ষার ফলাফল হাতে পাওয়ার আগেই মারা গেছেন। সরকারি হাসপাতাল ও ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে ফি নেয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞার আইইডিসিআরের সাবেক পরিচালক মাহমুদুর রহমানও পরীক্ষার জন্য মানুষের কাছ থেকে ফি নেয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন। "পরীক্ষার জন্য মানুষের কাছ থেকে ফি নেয়ার বিষয়টি বেশ সমস্যার তৈরি করেছে। মানুষের মধ্যে এটি বিভাজন তৈরি করেছে, বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে", বলেন তিনি। "মহামারির সময় মানুষের কাছে কাজ নেই, হাতে টাকা নেই। তারা খুবই অসুবিধার মধ্যে রয়েছে। পরীক্ষার জন্য সরকারের কোনো ফি নেয়া উচিত নয়।" স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর মানুষের বিশ্বাসের ঘাটতি আছে বলে ল্যান্সেটের কাছে মাহমুদুর রহমান মন্তব���য করেন, "পরীক্ষা করা নিয়ে কিছুদিন আগে জালিয়াতি হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের ওপর মানুষের বিশ্বাসের ঘাটতি রয়েছে। তাই তাদের মধ্যে টেস্ট করাতেও অনীহা রয়েছে।" মি. রহমান বলেন, "আরেকটি সমস্যা হল পরীক্ষার ফল পেতে দেরি হওয়া। কখনো কখনো পরীক্ষার ফল পেতে সপ্তাহ খানেক লেগে যায়, আবার কখনো আসেই না। তাই অনেকে পরীক্ষা না করিয়ে ঘরেই থাকেন।" মাহমুদুর রহমান মন্তব্য করেন যে সরকারের এখনই এমন একটি নজরদারির ব্যবস্থা প্রস্তুত করা উচিত যার মাধ্যমে কমিউনিটি পর্যায়ে ভাইরাসটি কীভাবে ছড়িয়ে পড়ছে, সেবিষয়ে আরো পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে এবং সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করা যাবে। বাংলাদেশে বর্ষাকাল চলছে এবং কিছুদিনের মধ্যেই ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন অবস্থায় কোভিড পরিস্থিতির আরো অবনতি হবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন। শামীম তালুকদার মন্তব্য করেন, "সরকারের অগ্রাধিকার অর্থনীতি, কিন্তু কোভিড-১৯ গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে এবং আরো মানুষ মারা যাবে।" এই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন বাংলাদেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতির সবচেয়ে খারাপ অবস্থা এখনো আসেনি। তবে এসব বিষয়ে ল্যান্সেটের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করা হলেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। বিজ্ঞান সাময়িকী ল্যান্সেট জার্নালে প্রকাশিত হওয়া এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে বাংলাদেশে কোভিড পরীক্ষা ও তত্ত্বাবধানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের নেয়া পদক্ষেপ সার্বিক করোনাভাইরাস পরিস্থিতি যাচাই প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে মনে করেছেন বাংলাদেশের গণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। +text: সালমান খান জেলে যাওয়ার দুদিনের মধ্যেই জামিন পেয়েছেন। আর তার পরের দিনই তাঁর জামিনে মুক্তির আবেদনের শুনানি শুরু হয় জেলা দায়রা জজের এজলাসে। কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়ার পর এত তাড়াতাড়ি কি কোনও সাধারণ নাগরিকের জামিন-মামলার শুনানি শুরু হয়? না কি সুপারস্টার, ভি আই পি বলেই সালমান খানের জামিনের আবেদন পেশ হওয়ার দুদিনের মধ্যেই সেই আবেদন মঞ্জুর করে দিল আদালত? সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবি আলোক কুমার বলছিলেন, "এটা ঠিকই যে সারা দেশের সব আদালতেই বহু মামলা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে, যার মধ্যে জামিনের আবেদনও অনেক দিন ধরে ঝুলে থাকে। একজন উকিল হিসাবে বলতে পারি এই দীর্ঘসূত্রিতার বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে।" "যদি উকিল বুদ্ধিমান হন, তাহলে মূল মামলার আদেশ বেরনোর আগেই জামিনের আবেদন তৈরী করে ফেলেন তিনি। সাজা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জামিনের আবেদন জানিয়ে দিতে পারেন তিনি। কিন্তু বেশীরভাগ উকিলই সেটা করেন না। আদালত কী নির্দেশ দেয় সেটা দেখে তারপর পুরো রায় পড়ার জন্য সময় নেন তারা। তারপরে জামিনের আবেদন জানানো হয়। এতেই অনেকটা সময় চলে যায়," বলছিলেন মি. আলোক কুমার। আরো পড়ুন: বেপরোয়া জীবনযাপন করা সুপারস্টার সালমান খান সালমান খান তবে কোনও বিচারক কবে জামিনের আবেদন শুনবেন, সেটা ঠিক করার অধিকার তাঁর রয়েছে। সেই অধিকার কখনও ব্যবহার করা হয়, কখনও করা হয় না, মন্তব্য আলোক কুমারের। আরেক সিনিয়র আইনজীবি সঞ্জয় হেগড়ে বলছিলেন, "সালমান খানের জামিন মামলার যে দ্রুত শুনানি হয়েছে, এটাই তো স্বাভাবিক। এটা আদালতের বিশেষ অধিকারের মধ্যেই পড়ে। তবে এমন মামলাগুলির ক্ষেত্রে অনেক সময়েই বিচারকরা চাপে পড়ে যান - বিশেষত যদি সংবাদমাধ্যম বা সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনও মামলা নিয়ে খুব বেশী উৎসাহ থাকে, সেই সব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করে দিতে চান তারা।" ঠিক এই বিষয় নিয়েই ২০০৪ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট একটি আদেশ দিয়েছিল। অমরাবতী বনাম উত্তর প্রদেশ সরকারের মধ্যে ওই মামলার রায় দিতে গিয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্ট বলেছিল, কোনও জামিন আবেদনের ওপরে সেই দিনই আদেশ দিতে হবে, এমন নির্দেশ যদি হাইকোর্ট থেকে দেওয়া হয়, তাহলে সেটা নিম্ন আদালতগুলির কাজে হস্তক্ষেপ করা হবে। ভারতীয় ফৌজদারী কার্যবিধি বা ক্রিমিন্যাল প্রসিডিওর কোডের ৪৩৭ আর ৪৩৯ ধারা অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেটদের এই অধিকার দেওয়া হয়েছে যে তিনি জামিন আবেদন পেশ হওয়ার দিনেই ‌আদেশ দিয়ে দিতে পারেন। তবে সেই দিন যদি জামিনের আবেদনের ওপরে কোনও নির্দেশ তিনি না দেন, তাহলে তার কারণ লিখিতভাবে রেকর্ড করে রাখতে হবে ওই ম্যাজিস্ট্রেটকে। আলোক কুমার বলছিলেন, "শুধু নিম্ন আদালতে নয়, সুপ্রীম কোর্টেও জামিনের আবেদন নিয়ে শুনানিতে অসামঞ্জস্য দেখা যায়। কোনও মামলায় হয়তো চার বছরেও জামিন পাওয়া যায় নি, আবার একই ধরণের অন্য একটি মামলায় দেখা গেছে চার মাসেই জামিন পাওয়া গেছে।" "তবে একই সঙ্গে এরকম উদাহরণও আছে, যেখানে জেলা আদালত বা হাইকোর্ট গরীব বা সাধারণ কোনও ব্যক্তির মামলাকে অন্যান্য মামলার থেকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। কিন্তু এটাও ঘটনা, কোনও সিনিয়র আইনজীবির দায়ের করা মামলায় হয়তো তাড়াতাড়ি শুনানির দিন ধার্য হল, আর জুনিয়র উকিলদের মামলার ক্ষেত্রে বলা হল আগে থেকেই অনেক মামলা জমে রয়েছে আদালতে," বলছিলেন আলোক কুমার। বন্দী সালমান খানের জন্য বাইরে ভক্তদের ভিড় সুপ্রীম কোর্টেরই সিনিয়র আইনজীবি প্রশান্ত ভূষণ অবশ্য বলছিলেন সালমান খানের মামলায় নিয়মের বিশেষ ব্যতিক্রম হয় নি। জামিন মামলার দ্রুত শুনানি হওয়াই বাঞ্ছনীয়। "যে কোনও জামিনের আবেদনই দ্রুত শুনানি হওয়া উচিত। কিন্তু সাধারণভাবে দেখা যায় যে গরীব মানুষের ভাগ্যে এরকমটা হয় না। ব্যবস্থাটাই এরকম হয়ে গেছে। ভি আই পিদের হাতে বড় বড় উকিল থাকে, তাঁদের হাতে অর্থ থাকে, প্রভাব থাকে। তাঁদের জন্য ন্যায়বিচার পাওয়াটা সুবিধাজনক।" ভি আই পিদের মামলাগুলির ক্ষেত্রে সুপ্রীম কোর্টও দুবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছে। ২০১৩ সালে সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি বি এস চৌহান বলেছিলেন, ভি আই পিরা আদালতের বেশী সময় নিয়ে নেন, অন্যদিকে সাধারণ মানুষের মামলাগুলির জন্য সময় কম পড়ে যায়। "আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি, সাধারণ মানুষ আমাদের কাছ থেকে কম সময় পান। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক," মন্তব্য ছিল ওই বিচারপতির। ২০১৪ সালেও সর্বোচ্চ আদালত আরেকটি ভি আই পি মামলাতেও যে মন্তব্য করেছিল, সেটাও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। হরিয়াণা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওম প্রকাশ চৌথালার জামিন আবেদনের শুনানিতে বলা হয়েছিল যে স্বাস্থ্যের অবনতির কারণে তাঁর জামিনের সময় বাড়ানো হোক। বিচারপতি এইচ এল দাত্তু ও বিচারপতি এস জে মুখোপাধ্যায়ের বেঞ্চ ওই আবেদনের শুনানিতে মন্তব্য করেছিলেন, "যখনই কোনও নামজাদা ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হন, তখনই তিনি হাসপাতালে ভর্তি হতে চান। এই ব্যাপারটাতে উৎসাহ দিলে গোটা ব্যবস্থাটাই ভেঙ্গে পড়বে।" বলিউডের সুপারস্টার সালমান খানকে যোধপুরের এক আদালত বৃহস্পতিবার কারাদণ্ড দিয়েছিল। +text: গার্মেন্টস শ্রমিকরা অভিযোগ করছেন, মজুরি কাঠামোতে শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে। শ্রমিক সংগঠনগুলোর নেতারা বলেছেন, বাড়ি ভাড়া ভাতা বাড়ানোর নামে শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়ে যে মজুরি কাঠামো করা হয়েছে, তাতে গার্মেন্টসের তিনটি পদের বা গ্রেডের শ্রমিকদের মূল বেতন কমে গেছে। এ নিয়েই অসন্তোষ থেকে শ্রমিকরা গত কয়েকদিন ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করেছে। শ্রমিক নেতারা বলছেন, মালিকদের ওপরই সমাধান নির্ভর করছে। মালিক পক্ষও দাবি করছেন, তারা সমাধান চান। তাহলে সমাধান হচ্ছে না কেন? সরকার বলছে, সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে। এখন রোববার ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে সমাধানের প্রশ্নে আলোচনা হবে। গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা করা হয় গত নভেম্বরে। তা বাস্তবায়ন করা হয়েছে ডিসেম্বর থেকে। কিন্তু বেতন হাতে পাওয়ার পর শ্রমিকরা বুঝতে পারেন যে, তাদের অনেকের ৮হাজার টাকার মূল মজুরি কমে গেছে। এই খাতে সাত ধরনের পদে বা গ্রেডে শ্রমিকরা কাজ করে থাকেন। ফ্যাক্টরি ফ্লোরে নিরলস কর্মী। এরমধ্যে মেশিন বা যন্ত্রপাতি যারা অপারেট করেন, তাদেরই তিনটি গ্রেডের শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। গার্মেন্টস শ্রমিকদের একটি সংগঠনের নেত্রী নাজমা আকতার বলছিলেন, মজুরি কাঠামোতে একটা শুভঙ্করের ফাঁকি রাখা হয়েছিল। "শ্রমিকদের যারা মূল শ্রম দেন বা মেশিনে কাজ করেন, তাদের মূল মজুরি কমে গেছে। সেকারণেই তাদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল।" অনেক শ্রমিক সংগঠনও অভিযোগ তুলেছে, নতুন মজুরি কাঠামোর মধ্যে একটা লুকোচুরি ছিল। সে বিষয়টিই শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ বাড়িয়েছে। গত কয়েকদিনে ঢাকা এবং এর আশে পাশে গার্মেন্টস অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ হয়েছে। কোন কোন জায়গায় বিক্ষোভ সহিংস রূপ নিয়েছে। মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ'র প্রেসিডেন্ট সিদ্দিকুর রহমান মজুরি কাঠামোতে লুকোচুরির অভিযোগ অস্বীকার করেন। "আমরা বাড়ি ভাড়ার ভাতা বাড়িয়েছিলাম। এখন তারা বলছে, তাদের মূল মজুরি কমে গেছে। পৃথিবীতে সব জায়গায় বেতন যখন বাড়তে থাকে, তখন উপরের গ্রেডগুলোতে কমতে থাকে। সেটা বিভিন্নভাবে এডজাস্ট করা হয়।" "ঢাকায় তিন হাজার কারখানা চলে। সেখানে কয়টা কারখানায় সমস্যা হচ্ছে? সমস্যা হচ্ছে দু'একটা কারখানায়। তারা বের হয়ে অন্য কারখানায় গিয়ে তারা আঘাত করছে, বা লোক নামানোর চেষ্টা করছে। এর পিছনে রাজনৈতিক কোন কিছু থাকতে পারে। কোন ইন্ধন-দাতা থাকতে পারে। আমাদের গত ছয় মাসে গ্রোথ অনেক ভাল। এটা কারও কারও ভাল নাও লাগতে পারে। সেটা সরকারকে খুঁজে বের করতে হবে।" ঢাকার সড়কে বিক্ষুব্ধ গার্মেন্টস কর্মী। আরও পড়তে পারেন: ভর্তি বাণিজ্য: বেসরকারি স্কুলে ভর্তি ফি বেঁধে দিতে পারে সরকার নতুন মন্ত্রীদের অনভিজ্ঞতা কি সমস্যা হতে পারে? গণতান্ত্রিক দেশের ত���লিকায় নেই বাংলাদেশ: ইকোনমিস্ট আওয়ামী লীগের টানা তৃতীয়বারের সরকার যখন শপথ নিয়েছে সেই সময়টাতে এই বিক্ষোভগুলো হয়েছে। সেই বিষয়টাকে তুলে ধরে সরকারও এর পিছনে রাজনীতি খুঁজছে। অবশ্য শ্রমিক বিক্ষোভের মুখে গত বৃহস্পতিবার শ্রম মন্ত্রণালয়ে সরকার, মালিক পক্ষ এবং শ্রমিক সংগঠনগুলোর নেতাদের বৈঠক হয়েছে। কিন্তু সমাধান আসেনি। সরকার সমাধানের প্রশ্নে সময় চাইছে। শ্রমিক নেতারা মনে করেন, মালিকপক্ষের উপরই সমাধান নির্ভর করছে। শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব আফরোজা খান বলেছেন, সমস্যা চিহ্নিত হওয়ায় এখন সমাধান সম্ভব হবে। "আমরা এই সমস্যাটা চিহ্নিত করেছি। এখন এই সমস্যা নিয়ে বসবো, তারপরই তো সমাধান আসবে। আমরা তো মালিকদের নিয়ে বসবো। আগে দেখি সমাধান করতে গেলে মালিকদের কাছ থেকে কী ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন হবে। মালিকরা তো সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত। তারাও আশ্বাস দিয়েছেন যে, কারও বেতন কমবে না।" মালিকপক্ষ বলছে, কারও মূল বেতন যাতে না কমে, সেটা বিবেচনায় রেখে একটি উপায় তারা চিন্তা করেছেন। সিদ্দিকুর রহমান বলছিলেন, "আমাদের একটাই উপায় আছে, বাড়ি ভাতা কমিয়ে আগের মতো ৪০ শতাংশে নিয়ে যদি মূল মজুরিতে বেড়ে যায়। এটা নিয়ে আমরা আলোচনা করবো। কিভাবে সমাধান করা যায়, সেই চেষ্টা আমরা করবো।" এখন রোববার শ্রম মন্ত্রণালয়ে আবারও সরকার, মালিক পক্ষ এবং শ্রমিক নেতাদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেই বৈঠকে সমাধানের উপায় বের করার চেষ্টা করা হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। বাংলাদেশে গার্মেন্টস শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামোর সমস্যা চিহ্নিত করা হলেও তা সমাধানের ব্যাপারে সরকার সময় চেয়েছে। +text: ঘুম ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব একটুখানি ঘুমের অভাবও আমাদের ভালো থাকা না থাকাকে অনেকখানি প্রভাবিত করে।অনেকেই আছেন যারা এক রাত না ঘুমালেই একদম ভেঙে পড়েন। তিন রাত না ঘুমালে আমাদের কর্মক্ষমতা স্বাভাবিকের তুলনায় কমে যায়। এক গবেষণা বলছে, কেউ টানা ১৭ থেকে ১৯ ঘণ্টা জেগে থাকলে যে ধরনের প্রভাব পড়ে, অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলেও মস্তিষ্কে একই ধরনের প্রভাব পড়ে। সময়ের সাথে সাথে এ ক্ষতির মাত্রা বাড়তে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, টানা ১১ দিন না ঘুমানোর ফলে আচরণ ও কাজে মারাত্মক প্রভাব পড়ে। মনোযোগ ও শর্ট টাইম মেমোরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, হেলুসিনেশন হয়, এমনকি মস্তিষ্ক বিকৃতিও হয়। বিজ্ঞানীরা বরাবরই যথেষ্ট ঘুমের ওপরে জোর দিয়ে আসছে। ঘুমের ক্ষেত্রে আলোর প্রভাব কতটা জরুরী তা হয়ত কিছুটা আড়ালেই রয়ে গেছে। শরীর-মন-ঘুম: কেন দিনের আলো এত গুরুত্বপূর্ণ ঘুম নিয়ে যেসব ধারণা আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে কম ঘুমে আয়ু কমে: রাতের ভালো ঘুম যেভাবে পাবেন প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো আলোর ব্যাপারটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারণ হল, এটি আমাদের চোখের বিশেষ আলোক সেন্সরের সাহায্যে আমাদের দেহঘড়ি বা বডি ক্লক নির্ধারণ করে। মানুষের চোখ যে কোনো পরিবেশে আলো এবং অন্ধকার চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী শরীরে সারকাডিয়ান ছন্দ বা ২৪ ঘণ্টা পর পর শারীরিক কার্যক্রম চালু ও বন্ধ হওয়া নির্ধারণ করে। কারো চোখ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার বডি ক্লকও নষ্ট হয়ে যায়, ফলে ঘুমাতে সমস্যা হয়। ২৪ ঘণ্টা অন্ধকারে থাকলে বা আলোর সংস্পর্শে না আসলেও মানুষের বডি ক্লকে সামান্যই পরিবর্তন হয়। গবেষণা বলছে, সেক্ষেত্রে আধ বা এক ঘণ্টা এদিক-ওদিক হতে পারে। ঘুমের ক্ষেত্রে আলোর প্রভাবের সবচেয়ে ভালো উদাহরণ জেট লেগ। আপনি প্লেনে চড়ে ভিন্ন টাইম জোনের কোনো দেশে যাওয়ার পরে দেখবেন আপনার শরীর ধীরে ধীরে ওই দেশের টাইম জোনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে। কয়েকদিন যাবার পরেই দেখবেন রাতের বেলা আপনি ঘুমাতে পারছেন, দিনে জেগে থাকতে পারছেন। ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষই বাইরে কাজ করত। ফলে সরাসরি আলোর সংস্পর্শে থাকত। এখনকার অফিসগুলোতে মানুষ বুঝতেই পারে না কোনদিকে বেলা গড়াল আর কখন সূর্য ডুবল। কারণ বেশিরভাগ মানুষের কর্মক্ষেত্রই এখন দালানের ভেতরে। বাইরের কাজ, যেমন মাছ ধরা বা কৃষিকাজ, আমেরিকার মোট চাকরির মোটে ১ শতাংশ। যেহেতু আমরা দীর্ঘসময় ধরে সূর্যের আলো বঞ্চিত হচ্ছি, এর প্রভাব পড়ছে আমাদের ঘুমের ওপরে তথাপি আমাদের ভালো থাকার ওপরে। সূর্যের আলো আমাদের শরীরের জন্য খুবই জরুরী। কার, কী মাত্রায় আলো দরকার তা হয়ত ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন হতে পারে, তবে কোনো সংশয় নেই যে অধিকাংশ দালানের ভেতরে আলোর যে ব্যবস্থা আছে তা আমাদের শরীরের জন্য পর্যাপ্ত নয়। পর্যাপ্ত সূর্যের আলোর অভাবে ইউরোপের ২-৮ শতাংশ মানুষ এক ধরনের ডিপ্রেশনে ভুগছে যার নাম সিজনাল ইফেক্টিভ ডিসঅর্ডার। এমন আরো অনেক এলাকা আছে যেখানে পর্যাপ্ত আলোর অভাবে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। রাতে কাজ করার বেশ মারাত্মক দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব আছে। সবচেয়ে ভয়ানক হল এর ফলে ছয় বছর পর্যন্ত আয়ু কমে যেতে পারে। রাতের শিফটে কাজ করা যারা রাতের বেলা কাজ করেন তাদের জন্য আলোর বিষয়টি আরো গুরুতর। তাদেরকে এমন সময় কাজ করতে হয় যখন তাদের শরীর চায় ঘুমাতে। ওই সময় শরীর কোনো ধরনের মাথা খাটাতে বা সতর্ক থাকতে চায় না অথচ সেটাই করতে হয়। যারা রাতে কাজ করে তারা হয়ত দিনে একটু ঘুমিয়ে রাতের ঘুমের অভাব পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে, কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। কারণ সাধারণত তারা দিনের বেলা অল্প সময়ের জন্য ঘুমায় আর ঘুম তত গভীরও হয় না। তাদের যখন জেগে থাকার কথা তারা তখন ঘুমায়, যখন ঘুমানোর কথা তখন জেগে থাকে আর এ কারণে তাদের স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাতে কাজ করার সাময়িক প্রভাব হল, তথ্য-উপাত্ত ঠিকভাবে বুঝতে না পারা, মনে রাখতে না পারা আর কিছু আচরণিক অস্বাভাবিকতা। রাতে কাজ করার বেশ মারাত্মক দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব আছে। সবচেয়ে ভয়ানক হল এর ফলে ছয় বছর পর্যন্ত আয়ু কমে যেতে পারে। নাইট শিফটে কাজ করা ৯৭ শতাংশ লোক কর্মক্ষেত্রে তাদের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়। যত বছর ধরেই তারা কাজ করুক না কেন। তারা তাদের শারীরবৃত্ত পরিবর্তন করতে পারে না। অফিসে যত আলোই থাকুক না কেন তা কখনোই দিনের আলোর সমকক্ষ নয়।অফিসের কৃত্রিম আলোর চেয়ে দিনের স্বাভাবিক আলো ২৫০ গুণ প্রখর। রাতের শিফট শেষ করে তারা যখন বাসায় যায় তখন তাদের শরীর সকালের আলোর সংস্পর্শে আসে। এই আলো তাদের শরীরে এই সংকেত পৌঁছায় যে এখন জাগার সময় হয়েছে। হার্ভাডের এক গবেষণায় দেখা গেছে, রাতের শিফটে কাজ করা লোকজনের অনেকে নিশাচর হয়ে যান। তারা কিছুতেই দিনের আলোয় বের হতে চান না। তবে অধিকাংশ মানুষের জন্য এটি কোনো বাস্তব সমাধান নয়। রাতে কাজ করার বেশ মারাত্মক দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব আছে সূর্যের আলো জরুরী অধিকাংশ নার্সিং হোমে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পৌঁছায় না। বেশিরভাগ হোমের ভেতরেই হালকা আলোর ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে বাসিন্দারা পর্যাপ্ত সূর্যের আলো থেকে বঞ্চিত হন। এসব নার্সিং হোমের বাসিন্দাদের ঘুমের সমস্যা হওয়াটা খুবই সাধারণ ঘটনা। এক ডাচ গবেষণায় নার্সিং হোমগুলোর বেডরুম অন্ধকার রেখে বাকি জায়গাগুলোতে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়। এর ফলে, সেখানকার বাসিন্দাদের দিনের বেলা ঝিমানোর সময় কমে, রাতের বেলা ঘুমানোর সময় বেড়ে যায়। তাদের মানসিক সামর্থ্য ও সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। আলোর অভাবের বিষয়টি শুধু আলোর পরিমাণের ওপর নির্ভর করে না। এর সাথে সময়ও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সন্ধ্যার মৃদু আলো আমাদের বডি ক্লকের বিলম্ব ঘটায় ফলে পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়। সকালে আলো বডি ক্লক এগিয়ে আনে, এর ফলে সকালে তাড়াতাড়ি ওঠা যায়। যখন মানুষ বাইরে কাজ করত তখন এটা কোনো সমস্যা ছিল না। সন্ধ্যার আলো ঘুমের যে দেরি ঘটাতো, সকালের আলো সে সময়টা এগিয়ে নিতো। দিনের আলো আমাদের দেহঘড়ির অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ করে কিন্তু এখন খুব কম লোকই সকাল ও সন্ধ্যার আলো দুটোরই সংস্পর্শে আসে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একটি ভালো উদাহরণ যারা সকালে একটু দেরিতে দিন শুরু করে আর সন্ধ্যা পর্যন্ত বাইরে থাকে। সন্ধ্যার আলো তাদের বডি ক্লক পিছিয়ে দেয়।মানে তারা দেরিতে ঘুমায় এবং দেরিতে ওঠে। বয়ঃসন্ধিকাল ও প্রাপ্তবয়স্ক হবার আগে হরমোনের পরিবর্তনের ফলে এ বিষয়টি সংহত হয় যার ফলে বডি ক্লক প্রায় দুই ঘণ্টা পিছিয়ে যায়। ধূমপান, মদ্যপান কিংবা অরক্ষিত যৌন মিলনের ক্ষতিকর দিক নিয়ে যত আলোচনা করা হয়, ঘুমানোর প্রয়োজনীয়তা এবং এক্ষেত্রে আলোর ভূমিকা নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা হয় না। ঘুম নিয়ে পর্যাপ্ত আলাপ আলোচনা হলে মানুষ এ বিষয়ে আরো সচেতন হতে পারত। পর্যাপ্ত আলো পাওয়া, দিনের আলো ও সন্ধ্যার আলোর সংস্পর্শে আসার বিষয়ে সতর্ক হত। নীতিনির্ধারকরাও বিষয়গুলো মাথায় রেখে কাজের সময়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়ার সময় নির্ধারণ করতে পারতেন। ঘুমাতে যাওয়ার আগে যতটা কম পারা যায় আলোর সংস্পর্শে আসা আর সকালের আলোতে যত বেশি থাকা যায় ততই আপনার ভালো ঘুম হবে। এবং একই সময়ে ঘুমাতে পারবেন। আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি, আমাদের মস্তিষ্ক তখন স্মৃতি ও তথ্য সংরক্ষণ করে।শরীর ক্ষতিকারক উপাদানগুলো সরিয়ে ফেলে সব ঠিকঠাক করে যাতে জাগার পরে শরীর আবার ঠিকমত কাজ করতে পারে। +text: দাড়ি নাকি ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংসে সাহায্য করে এ নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে বিজ্ঞানী আর গবেষকদের মধ্যে। বিবিসির এক অনুষ্ঠান, “ট্রাস্ট মি, আই অ্যাম এ ডক্টর” সম্প্রতি ঠিক এই প্রশ্নে একটা ছোট্ট পরীক্ষা চালিয়েছিল। তার ভিত্তিতে বিজ্ঞানীরা বলছেন, ক্লিন শেভড পুরুষের চেয়ে দাড়িওয়ালাদের মুখে রোগ-জীবানু ব���শি, এমন কোন প্রমাণ তারা পাননি। যারা দাড়ি রাখেন, তারা এর মধ্যে নানা রোগ-জীবাণু বহন করে চলেছেন এমন ভয় অনেকের মধ্যেই কাজ করে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতাল সম্প্রতি এ নিয়ে গবেষণা চালায়। তাদের গবেষণার ফল অনেককেই অবাক করেছে। দাড়ি রাখার প্রতিযোগিতায় নানা ফ্যাশনের দাড়ি ‘জার্নাল অব হসপিটাল ইনফেকশনে’ প্রকাশিত এই গবেষণার ফলে বলা হচ্ছে, দাড়িওয়ালাদের চেয়ে বরং দাড়ি কামানো পুরুষের মুখেই তারা বেশি রোগ-জীবাণু পাওয়া গেছে। গবেষকরা বলছেন, মেথিসিলিন-রেসিস্ট্যান্ট স্ট্যাফ অরিয়াস (এমআরএসএ) বলে যে জীবাণু অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী, সেটি দাড়িওয়ালাদের চাইতে দাড়ি কামানোদের মুখে তিনগুণ বেশি মাত্রায় পাওয়া গেছে। এর কারণ কি? গবেষকরা বলছেন, দাড়ি কামাতে গিয়ে মুখের চামড়ায় যে হালকা ঘষা লাগে, তা নাকি ব্যাকটেরিয়ার বাসা বাঁধার জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে। অন্যদিকে দাড়ি নাকি সংক্রমণ ঠেকাতে সাহায্য করে। বিবিসির “ট্রাস্ট মি, আই অ্যাম এ ডক্টর” অনুষ্ঠানে বেশ কিছু পুরুষের দাড়ি থেকে ব্যাকটেরিয়ার নমূনা সংগ্রহ করে একই ধরণের পরীক্ষা চালানো হয়। ইউনিভার্সিটি কলেজ, লন্ডনের গবেষক ড: অ্যাডাম রবার্ট এই গবেষণার ফল দেখে বলছেন, দাড়িতে এমন কিছু ‘মাইক্রোব’ আছে, যা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসে সাহায্য করে। দাড়ি রাখা কি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো? নাকি আপনার মুখভর্তি দাড়ি আসলে নানারকম রোগ-জীবাণুর এক বিরাট আস্তানা?