title
stringlengths 10
148
| text
stringlengths 14
34.6k
| summary
stringlengths 1
7.08k
|
---|---|---|
প্রতিটি গ্রামে কমিটি গঠন করবে হেফাজতে ইসলাম | ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষায় দেশের প্রতিটি গ্রামে কমিটি গঠন করবে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। বর্তমানে প্রতিটি কওমি মাদ্রাসায় কমিটি রয়েছে তাদের।
শুক্রবার জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদ্রাসায় এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেন হেফাজতের সিনিয়র নেতারা। সভায় সভাপতিত্ব করেন হেফাজতের সিনিয়র নায়েবে আমীর ও দারুল উলূম হাটহাজারীর প্রধান মুফতি খলিল আহমদ কাসেমী।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, হেফাজত প্রতিটি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামে কমিটি গঠন করবে। এসব কমিটিকে 'নন-মাদ্রাসা কমিটি' হিসেবে অভিহিত করা হবে। আসন্ন ঈদের পর থেকেই এই কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
২০২২ সালে দেশে মোট ১৯ হাজার ১৯৯টি কওমি মাদ্রাসা রয়েছে বলে সংসদে জানিয়েছিলেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী।
বৈঠকে হেফাজত নেতারা গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা করেন।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা জানান, সরকার বারবার গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির আশ্বাস দিলেও তার কথা রাখেনি।
হেফাজতের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হকসহ গ্রেপ্তারকৃত সব নেতাকর্মীর মুক্তি ও তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে কঠোর আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বৈঠকে।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে হেফাজতের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি আমরা ঈদের পর আন্দোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের তৃণমূল নেতারা হতাশ এবং তাদের চাপেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠনটিও ভারতীয় পণ্য বয়কট আন্দোলনকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এর প্রচারে তারা রাজপথে নামবে না।
ভারতীয় পণ্য বয়কটের আহ্বান জানাতে সংগঠনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা এবং লিফলেট বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
| ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষায় দেশের প্রতিটি গ্রামে কমিটি গঠন করবে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। বর্তমানে প্রতিটি কওমি মাদ্রাসায় কমিটি রয়েছে তাদের। |
‘ইউএনও সাহেব, আপনি আমার ক্লিয়ার মেসেজ পেয়েছেন?’ | চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা) আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী অন্তত এক সপ্তাহ আগে আবেদন না করলে তার নির্বাচনী এলাকায় কোনো সমাবেশের অনুমতি না দিতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, 'আমাদের দল বা অন্য দলের কেউ যদি এখানে সমাবেশ করতে চায়, তাদের অন্তত এক সপ্তাহ আগে অনুমতি নিতে হবে। আপনি আগামীকাল সমাবেশ করবেন আর আজকে অনুমতি নেবেন, এটা হবে না।'
গতকাল শুক্রবার আনোয়ারা উপজেলা মিলনায়তনে এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় তিনি বলেন, 'আজ থেকে আমার এই নির্দেশ কার্যকর হবে।'
মঞ্চে উপস্থিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দিকে ফিরে সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামানকে বলতে শোনা যায়, 'ইউএনও সাহেব, আপনি আমার ক্লিয়ার মেসেজ পেয়েছেন?'
তিনি বলেন, 'এটা আমার নির্বাচনী এলাকা এবং আমি এই আসনের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। এখানে কোনো দ্বৈত শাসন থাকবে না।'
কারো নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, 'যদি কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায় (আমার নির্বাচনী এলাকায়), আমি খুব ভালো করেই জানি কীভাবে পরিস্থিতি ট্যাকল (সামাল) দিতে হয়।'
তবে স্থানীয়রা বলেছেন, তার বক্তব্য অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের অনুসারীদের উদ্দেশ্য করে দেওয়া। ওয়াসিকা একই নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ২৩ মার্চ আনোয়ারা উপজেলায় আয়োজিত এক সমাবেশে ওয়াসিকা প্রধান অতিথি ছিলেন। এর আগে ৯ মার্চ আনোয়ারা উপজেলায় ওয়াসিকাকে গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়। উভয় সমাবেশে স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কালাম চৌধুরী।
যোগাযোগ করা হলে আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, 'সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার সাইফুজ্জামানের নেই।'
তিনি আরও বলেন, 'কাকে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে এবং কাকে দেওয়া হবে না, সেটা বলার তিনি কে? প্রশাসনই এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।'
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলার ইউএনও ইশতিয়াক ইমন বলেন, সমাবেশের আবেদনের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন নয়, পুলিশ কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়।
তিনি বলেন, 'সমাবেশ যদি নগরীতে হয়, তাহলে পুলিশ কমিশনারের অনুমতি নিতে হয় এবং নগরীর বাইরে হলে জেলা পুলিশ সুপারের অনুমতি নিতে হবে। উপজেলা প্রশাসন থেকে কোনো অনুমতি দেওয়া হয় না।'
এক সপ্তাহ আগে অনুমতির জন্য আবেদন না করলে কেন কাউকে সমাবেশ করতে অনুমতি না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সংসদ সদস্য, তা জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, 'আমি জানি না এমপি স্যার কেন এটা বলেছেন। আপনি বরং তাকে জিজ্ঞেস করুন।'
এই ব্যাপারে জানতে এই প্রতিবেদক সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ওয়াসিকা আয়শা খানের ফোনেও কয়েক দফায় ফোন করা হয় তার বক্তব্য জানতে। কিন্তু তিনিও ফোন রিসিভ করেননি।
| চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা) আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী অন্তত এক সপ্তাহ আগে আবেদন না করলে তার নির্বাচনী এলাকায় কোনো সমাবেশের অনুমতি না দিতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। |
‘কেউ ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে—প্রত্যাশায় থাকলে ড্রয়িং রুমে বসে সিনেমা দেখতাম’ | বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, কেউ ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে বিএনপি যদি সেই প্রত্যাশায় বসে থাকত, তাহলে তো বিগত দেড় বছর ধরে আমাদের ড্রয়িং রুমে বসে এয়ার কন্ডিশন চালিয়ে আমরা টেলিভিশনে সিনেমা দেখতাম।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর মগবাজারে যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়নের বাসায় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি বিদেশিদের কাছে ধরনা দিচ্ছে—আওয়ামী লীগের এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মঈন খান গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, 'সরকার যে অভিযোগগুলো আনছে, প্রথমত এই অভিযোগগুলোর পেছনে কোনো সত্যতা আছে? সেটাই হলো প্রশ্ন। সরকার যে কথাগুলো বলছে তার পেছনে তো কোনো যুক্তি নেই।'
তিনি বলেন, 'বিদেশিদের কথা বলেছে, কেউ ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে বিএনপি যদি সেই প্রত্যাশায় বসে থাকত, তাহলে তো বিগত দেড় বছর ধরে আমাদের ড্রয়িং রুমে বসে এয়ার কন্ডিশন চালিয়ে আমরা টেলিভিশনে সিনেমা দেখতাম। আমরা কি বিগত দেড় বছর সেটা করেছি?
'আমরা বিগত দেড় বছর সারা বাংলাদেশ চষে ফেলেছি। আমরা জনসমাবেশ করেছি, প্রতিবাদ সভা করেছি লাখ লাখ মানুষকে নিয়ে। সরকার ভীত হয়ে; সাধারণত বিরোধী দল কোনো দেশে হরতাল দেয়, সরকার নিজেই প্রতিবাদ সভাগুলো বানচাল করার জন্য সরকারিভাবে গাড়ি-ঘোড়া সব চলাচল বন্ধ করে দিয়ে, এমনকি তাদের প্রতীক যে নৌকা সেই নৌকা চলাচল বন্ধ করে দিয়ে যাতে মানুষ মিটিংয়ে আসতে না পারে; তারা নিজেরা অঘোষিত হরতাল ঘোষণা করেছিল। এই হলো বাংলাদেশের রাজনীতির বাস্তব অবস্থা,' বলেন তিনি।
এ সময় বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচির কথা তুলে ধরে মঈন খান।
তিনি বলেন, 'সরকার যে অভিযোগগুলো আনে, সেগুলো আনতে পারে। এর বাইরে সরকার আরও অনেক কথা বলতে পারে কিন্তু কোনোটারই কোনো যুক্তি নেই। এগুলো সম্পূর্ণ যুক্তিহীন কথা এবং বাংলাদেশের মানুষ জানে, যে কথাগুলো বলছে সরকার, এর পেছনে কোনো রকম কোনো সত্যতা নেই। জানে বলেই নির্বাচনকে (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন) তারা সম্পূর্ণ নীরবে প্রত্যাখ্যান করে সরকারকে বুঝিয়ে দিয়েছে যে, এই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই।'
সরকার ভিন্ন মত প্রকাশের সুযোগ দিচ্ছে না অভিযোগ করে মঈন খান বলেন, 'আজকে সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে, এটা আমরা দেখতে পাচ্ছি কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এই যে, সরকার যদি মানুষের ভালোবাসা নিয়ে এ দেশে ক্ষমতায় থাকতে চায়, তাহলে মানুষকে কথা বলার স্বাধীনতা দিতে হবে। ভোটের স্বাধীনতা দিতে হবে। এ দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।'
| বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, কেউ ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে বিএনপি যদি সেই প্রত্যাশায় বসে থাকত, তাহলে তো বিগত দেড় বছর ধরে আমাদের ড্রয়িং রুমে বসে এয়ার কন্ডিশন চালিয়ে আমরা টেলিভিশনে সিনেমা দেখতাম। |
‘মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ৩ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে, শিগগির ফেরত পাঠানো হবে’ | বিদ্রোহী হামলার মুখে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তিন সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। শিগগির তাদের ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত রংপুর বিভাগীয় মত বিনিময় সভা শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
মিয়ানমার থেকে বিজিপির (বর্ডার গার্ড পুলিশ) আরও তিন সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, 'মিয়ানমার থেকে আজকে তিনজন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা—একজন সার্জেন্ট, একজন ক্যাপ্টেন ও একজন সৈনিক পালিয়ে এসেছে। তারা আমাদের বিজিবির (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) হেফাজতে আছে। ইতোপূর্বে বিজিপির ১৭৭ জন পালিয়ে এসেছিল তাদের নৌপথে নিয়ে যাওয়ার জন্য মিয়ানমার প্রস্তাব করেছে। আমরা সেটি নিয়ে কাজ করছি।
'আমরা আশা করছি, খুব সহসা তাদের ফেরত পাঠাতে পারব। আজকে নতুন করে সেনাবাহিনীর তিন সদস্য পালিয়ে আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছে,' বলেন তিনি।
জলদস্যুদের হাতে জিম্মি ২৩ জনকে শিগগির দেশে ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'সোমালিয়ার জলদস্যুদের সঙ্গে ইতোমধ্যে যোগাযোগ হয়েছে এবং তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। আমরা আশা করছি, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সহসা আমাদের নাবিকদের মুক্ত করতে পারব। জাহাজটিও মুক্ত করতে পারব।'
তিনি বলেন, 'আমাদের নাবিকরা সবাই ভালো আছে, তারা কেবিনে আছে, খাবার-দাবারের কোনো সমস্যা নেই। নাবিকদের সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ এ পর্যন্ত করা হয়নি।'
| বিদ্রোহী হামলার মুখে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তিন সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। শিগগির তাদের ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। |
যারা পণ্য বর্জন করতে বলে, তাদের রান্না ঘর-ড্রেসিং রুম-শোবার ঘরে ভারত: কাদের | আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'ভারতীয় পণ্য যারা বর্জন করতে বলে, তাদের রান্না ঘরে ভারত, তাদের ড্রেসিং রুমে ভারত, তাদের শোবার ঘরে ভারত। এটা হলো বাস্তবতা।'
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত রংপুর বিভাগীয় মত বিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সঠিক পথে আছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আজকে বাংলাদেশে যে যেটাই বলুক, আমাদের ভেতরের খবর আমরা জানি। আর্থিক বিভিন্ন সূচকে আমাদের অবস্থান আমরা জানি।'
তিনি বলেন, 'এই মুহূর্তে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত স্টেবল, আমাদের এখন আশঙ্কা করার কোনো কারণ নেই। আপনারা অপপ্রচার-মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত হবেন না।'
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'ভারত আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। দুঃসময়ে, একাত্তরে পাশে দাঁড়িয়েছে। সেই ভারত বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের খেলা; একাত্তরেও এই খেলা চলেছিল। এই অশুভ খেলায় একাত্তরের মতো ভারতসহ কিছু বন্ধু এবারও আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এটা হলো ভারতের অপরাধ। সে ভারতীয় পণ্য বর্জন করতে বলে। ভারতীয় পণ্য যারা বর্জন করতে বলে, তাদের রান্না ঘরে ভারত, তাদের ড্রেসিং রুমে ভারত, তাদের শোবার ঘরে ভারত। এটা হলো বাস্তবতা। রাজনীতির এই নোংরা খেলা পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে যে অশুভ খেলা—ভারত বিরোধিতা, ঠিক একই অশুভ খেলা আবার শুরু হয়েছে। সব কিছু হারিয়ে বিএনপি এখন ভারত বিরোধিতায় নেমেছে। অ্যান্টি ইন্ডিয়া ক্যাম্পেইন।'
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা বিভ্রান্ত হবো না। আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। কিছুই করতে পারবে না। কিছু করার ক্ষমতা তাদের নেই। আজকে নেতারা যখন একে একে জেল থেকে ছাড়া পেল, তখন বলে ৮০ শতাংশ নেতাকর্মী নাকি কারাগারে নির্যাতিত হয়েছে।'
এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নির্যাতিত নেতাকর্মীর তালিকা প্রকাশ করার আহ্বান জানান কাদের।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, 'আমাদের আজকে নিজেদের মনে রাখতে হবে, আপন ঘরে যার শত্রু তার শত্রুতা করার জন্য বাইরের শত্রুর দরকার হয় না। আপন ঘরের শত্রু তাড়াতে হবে। আপন ঘরে শত্রু রেখে আমরা কোনো দিনও আমাদের লক্ষ্য, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লড়াই সফল হবে না।'
ঘরের সমস্যা ঘরে সমাধান করা হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'ঘরের মধ্যে যদি আমরা একে অপরের সঙ্গে শত্রুর মতো আচরণ করি; কিছু কিছু ঘটনা জাতীয় নির্বাচনের পরে বিভিন্ন জায়গায় ঘটে গেছে। এর পুনরাবৃত্তি যেন আর না হয় সে ব্যাপারে আমি সবাইকে সতর্ক থাকতে অনুরোধ করব। আমরা চ্যালেঞ্জিং টাইম অতিক্রম করছি। এ সময় ঠান্ডা মাথায় কাজ করতে হবে। কথা বলতে সাবধান থাকতে হবে। দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা অনেকেই বলে ফেলেন। দেখি পত্র-পত্রিকায় বের হয়। ফেসবুক তো আছেই, সঙ্গে সঙ্গে সারা দুনিয়ায় চলে যায়। এখানকার একটা ঘটনা আমরা দেখার আগে সাউথ আফ্রিকা থেকে ফোন পাই। এটা দলের জন্য কতটা লজ্জার ব্যাপার, একটু ভেবে দেখবেন।'
| আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'ভারতীয় পণ্য যারা বর্জন করতে বলে, তাদের রান্না ঘরে ভারত, তাদের ড্রেসিং রুমে ভারত, তাদের শোবার ঘরে ভারত। এটা হলো বাস্তবতা।' |
উপজেলা নির্বাচন আনবায়াসড, ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার করতে চাই: নেতাকর্মীদের কাদের | আওয়ামী লীগ আসন্ন উপজেলা নির্বাচন আনবায়াসড, ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার করতে চায় উল্লেখ করে দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এমপি-মন্ত্রীরা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে জেতানোর জন্য গোটা প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত করবে, এটা হতে পারবে না।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত রংপুর বিভাগীয় মত বিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'সংগঠন যখন আছে, সংগঠনে সমস্যাও থাকবে। আওয়ামী লীগ বড় দল, বড় দলে কখনো কখনো কিছু সমস্যা আমাদেরকে সাংগঠনিক কার্যক্রমকে চালিয়ে যেতে বাধাপ্রাপ্ত করে।'
তিনি বলেন, 'আমরা এবার প্রথম থেকেই আটঘাট বেঁধে নামতে চাই এবং নির্বাচনের পরপরই আমরা দলের সাংগঠনিক প্রক্রিয়ার দিকে আমাদের সভাপতির নির্দেশে নজর দিয়েছি। ইতোমধ্যে কিছু কিছু জেলায় আমাদের কোনো কোনো সমস্যার ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কিছু ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। কারণ ফ্রি স্টাইলে দল চলে না। যার যেমন খুশি যখন-তখন দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য রাখবেন, সেটার দায় দল বহন করবে—এটা হতে পারে না। একজনের একটা বক্তব্য গোটা দলের শৃঙ্খলার ওপর আঘাত হানতে পারে। এমন কিছু হলে অবশ্যই আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে।'
কাদের বলেন, 'সামনে উপজেলা নির্বাচন। এই নির্বাচন এবার নতুনভাবে, নতুন পরিবেশে আপনাদের অনুরোধে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার সুযোগ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা এর আগে ইউনিয়ন পর্যায়েও নৌকা দিয়েছি। আমরা দেখতে চাই যে, এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন কতটা প্রতিযোগিতামূলক, কতটা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়, এখন এখানে কত ফেয়ার কমপিটিশন হয়। আমি এমপি, আমি নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করব, আমার একজন থাকবে, তাকে জেতানোর জন্য গোটা প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত করব—এটা হতে পারবে না।'
তিনি বলেন, 'যে উদ্দেশ্যে এই ইলেকশনকে উন্মুক্ত করা হচ্ছে, সেই উদ্দেশ্যটা কোনো অবস্থাতেই ব্যাহত করা যাবে না। প্রতিযোগিতা যারা করতে চায় করুক। আমরা একটা আনবায়াসড, ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন করতে চাই উপজেলায়। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলে। নির্বাচনের আগে যে আশঙ্কা, ভয়-আতঙ্ক ছিল, সেটা কিন্তু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে কেটে গেছে। সারা বিশ্ব নির্বাচন বাংলাদেশের নির্বাচন প্রত্যক্ষ করেছে। ৮১টি দেশ নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে এবং ৩২টি আন্তর্জাতিক সংস্থা অভিনন্দন জানিয়েছে এবং নিবিড়ভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।
'আজকে বিএনপি কী বললো-না বললো এটা বিচার করে রাজনীতি চলবে না। বাংলাদেশের বাস্তবতার সঙ্গে তাদের চিন্তা-চেতনার কোনো মিল নেই। তারা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার পরও ৪২ শতাংশ ভোটার বাংলাদেশের নির্বাচনে ভোট দিয়েছে। এখানে নির্বাচনের ঘাটতি কোথায়? টার্ন আউট সন্তোষজনক,' যোগ করেন তিনি।
বিএনপির শক্তি কমে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'মানুষের শক্তি কমে গেলে মুখের বিষ উগ্র হয়ে ওঠে। বিএনপি নেতাদের কথা শুনলে এখন এটাই মনে হয়। এত বিষ তাদের মুখে। এত বাজে কথা, এত নোংরা একটি রাজনৈতিক দলের নেতারা বলতে পারে এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়।'
| আওয়ামী লীগ আসন্ন উপজেলা নির্বাচন আনবায়াসড, ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার করতে চায় উল্লেখ করে দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এমপি-মন্ত্রীরা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে জেতানোর জন্য গোটা প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত করবে, এটা হতে পারবে না। |
২৫ রমজানের মধ্যে শ্রমিক ও কর্মচারীদের বেতন-বোনাসের টাকা দিতে হবে: বাম জোট | বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা বলেছেন, আগামী ২৫ রমজানের মধ্যে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-বোনাসের টাকা দিতে হবে। নানা অজুহাত দেখিয়ে বেতন-বোনাস থেকে শ্রমিক ও কর্মচারীদের বঞ্চিত করা যাবে না। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে।
আজ শুক্রবার সকাল ১১টায় বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পর্ষদের সভা মুক্তি ভবনের সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় নেতারা এ কথা বলেন।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন বাসদের (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিখিল দাস, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শামীম ইমাম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী ও শহিদুল ইসলাম সবুজ।
সভায় নেতারা উপজেলা নির্বাচনে জামানতের টাকা ১৫ গুণ বৃদ্ধি, ব্যয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি, রঙিন পোস্টার ছাপানোর অনুমতিসহ ব্যয় বৃদ্ধির আইনি সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করে বলেন, 'দেশে এমনিতেই নির্বাচন নেই, নির্বাচন কমিশন সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে। জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আশাকে ধূলিসাৎ করে দিচ্ছে। আর এই জামানত বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে তৃণমূল পর্যায়েও নির্বাচনকে কোটি টাকা ও লুটেরাদের খেলার বস্তুতে পরিণত করা হচ্ছে।'
সভায় অবিলম্বে এই গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিল এবং সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি প্রবর্তনসহ নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন, দক্ষ ও শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
সভায় বিভিন্ন ব্যাংক একত্রীকরণের খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, 'ব্যাংক খাতের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের জেলে ভরার কথা, সেটা না করে সরকার একীভূত করার মধ্য দিয়ে এসব দুর্নীতিবাজদের কি প্রশ্রয় দিচ্ছে না?'
সভায় দুর্নীতি লুটপাট, অর্থ পাচারকারী, ঋণ খেলাপিদের তালিকা প্রকাশ, এসব ঘটনার নেপথ্যের নায়কদের চিহ্নিত করা এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
সভায় 'নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে ব্যর্থ সরকারের' সমালোচনা করে বলা হয়, 'মুক্তবাজারের নামে চলমান লুটপাট ও সিন্ডিকেটের ব্যবস্থা বহাল রেখে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।'
সারাদেশে রেশন ব্যবস্থা, ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু, সরকারি উদ্যোগে নিত্যপণ্যের বোফার স্টক গড়ে তোলা এবং সিন্ডিকেটের হাত থেকে আমদানি পণ্যকে মুক্ত করার দাবিও জানানো হয় সভায়। একইসঙ্গে নিত্যপণ্যসহ বিদ্যুৎ-গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির যে কোনো গণবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়।
সভায় ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় থানায় কর্মীসভা ও জেলায় জেলায় কর্মীসভাসহ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
| বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা বলেছেন, আগামী ২৫ রমজানের মধ্যে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-বোনাসের টাকা দিতে হবে। নানা অজুহাত দেখিয়ে বেতন-বোনাস থেকে শ্রমিক ও কর্মচারীদের বঞ্চিত করা যাবে না। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে। |
ড. ইউনূস ইসরায়েলির পুরস্কার নিয়ে প্রকারান্তরে গাজা গণহত্যায় সমর্থন দিয়েছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী | পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, শান্তিতে নোবেলজয়ী হয়েও ড. ইউনূস গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞে নিশ্চুপ থেকে একজন ইসরায়েলির দেওয়া পুরস্কার নিয়ে প্রকারান্তরে গণহত্যায় সমর্থন দিয়েছেন। ইউনূস সেন্টার এটিকে ইউনেস্কোর পুরস্কার বলে মিথ্যাচার করছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এই এ কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান বলেন, 'আমি ড. ইউনূসের প্রতি যথাযথ সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, ইউনূস সেন্টারের মিথ্যাচারে আমি বিস্ময়ে হতবাক। সম্প্রতি আজারবাইজানের বাকুতে একটি সম্মেলনে মিজ হেদভা সের নামে একজন ভাস্কর, যিনি ইসরায়েলি, তিনি ড. ইউনুসকে একটি পুরস্কার দিয়েছেন। এ সম্মেলনে ইউনেস্কো কোনোভাবে জড়িত ছিল, কিন্তু এই পুরস্কার কোনোভাবেই ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে তো নয়ই, একজন ব্যক্তির পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে। ইউনূস সেন্টার এটিকে ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে বলে অপপ্রচার করেছে। তবে এটি প্রথম নয়, এর আগেও এ ধরনের মিথ্যাচার ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে করা হয়েছে।'
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'ড. ইউনূস শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। কিন্তু গাজায় আজ নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হয়েছে, নারী ও শিশুদের হত্যা করা হয়েছে। এটি নিয়ে তিনি একটি শব্দ উচ্চারণ করেননি বা প্রতিবাদ করেননি। বরং এই সময়ে তিনি একজন ইসরায়েলির কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। এটির অর্থ কি এটিই নয় যে ড. ইউনূস প্রকারান্তরে গণহত্যায় সমর্থন দিয়েছেন! এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।'
এ সময় ২৫ মার্চ মধ্যরাতে লালমনিরহাট ও ২৬ মার্চ ভোরে নওগাঁ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনায় বিজিবির মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো এবং সীমান্তে ফ্ল্যাগ মিটিংও হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন অনেকদিন ধরেই আমরা ভারতের সঙ্গে এ বিষয়টি আলোচনা করছি। সম্প্রতি ভারত সফরেও এ বিষয়টি নিয়ে আমি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলোতে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করেছি। এর পরিপ্রেক্ষিতে সীমান্তে এখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। রাবার বুলেটে অনেকে আহত হয় কিন্তু প্রাণহানি কমে এসেছে। আমাদের লক্ষ্য প্রাণহানিকে শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসা।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, সোমালি জলদস্যুদের কবল থেকে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর নাবিকদের নিরাপদে উদ্ধার ও জাহজকে মুক্ত করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।
তিনি বলেন, 'জাহাজ সম্পর্কে শুধু এটুকু বলতে চাই, নাবিকদের মুক্ত করার জন্য আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগে আছি। আমরা নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছি এবং আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নাবিকদের নিরাপদে উদ্ধার করা এবং জাহাজ উদ্ধার করা। আমরা অনেক দূর এগিয়েছি।'
জাহাজে খাবারের সংকট নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ওই জাহাজে খাবারের সংকট নেই। এর আগে তিনমাস ধরে জলদস্যুদের কবলে থাকা অন্য জাহাজেও খাবারের সংকট ছিল না, এখানেও নেই।
| পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, শান্তিতে নোবেলজয়ী হয়েও ড. ইউনূস গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞে নিশ্চুপ থেকে একজন ইসরায়েলির দেওয়া পুরস্কার নিয়ে প্রকারান্তরে গণহত্যায় সমর্থন দিয়েছেন। ইউনূস সেন্টার এটিকে ইউনেস্কোর পুরস্কার বলে মিথ্যাচার করছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। |
কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল | সারা দেশে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঈদ উপহার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
আমরা বিএনপি পরিবার নামে একটি সংগঠন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ফখরুল বলেন, 'সারা বাংলাদেশে এমন একটা পরিবেশ-পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে মানুষ সব সময় একটা ভয়ে থাকে, ত্রাসে থাকে। ভয় ও ভয় প্রবণতা তৈরি করা হয়েছে। কখন, কাকে, কীভাবে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই।'
তিনি বলেন, 'একটা কথা কবে বলেছে, সেটার জন্য ১০ বছর পরেও মামলা হয়। মোবাইল এখন ব্যবহার করেন সবাই, ফেসবুকে মনের কথা লিখলে; যদি তাদের বিরুদ্ধে দেয়, সে যেখানে থাকুক, তাকে তুলে নিয়ে আসে।'
কারাবাসের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'একটি ছেলের সিরাজগঞ্জে বাড়ি, ফেসবুকের একটি পোস্টে লাইক দেওয়ার কারণে র্যাব তাকে তুলে নিয়ে এসে প্রায় ১৪ দিন নির্যাতন করে আরেকটি মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠিয়েছে। সে এখনো জামিন পাচ্ছে না। এটা আমাদের একটা নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'এই ফ্যাসিবাদী সরকার বিভিন্ন কৌশলে, বিভিন্ন পদ্ধতিতে নির্বাচন ব্যবস্থাটাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। একটি মিথ্যা-জালিয়াতির নির্বাচন করে, সেই নির্বাচন করে আবার সে ক্ষমতায় চলে আসে। আমরা বিএনপি এবং যারা গণতন্ত্রমনা দল আছি, তারা প্রথম থেকেই চেষ্টা করছি, আমরা সংগ্রাম করছি, লড়াই করছি। হাজার হাজার মানুষ রাজপথে আসছে, রাজপথে আমাদের ছেলেরা প্রাণ দিয়েছে।'
বিএনপি নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের রেহাই দেওয়া হয়নি মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, 'আমাদের ছত্রদল-যুবদলের ছেলেদের শারীরিকভাবে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। কারও পায়ের নখ তুলে নেওয়া হয়েছে, কারও পা মুচড়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে, কারও হাত ভেঙে দিয়েছে এবং অবিশ্বাস্যভাবে সত্য যে, তারা কোনো চিকিৎসা পায়নি। তাদের সেইভাবে জেলে ফেলে দিয়ে গেছে, জেলেও তাদের কোনো চিকিৎসা হয়নি। আমরা বিভিন্নভাবে খবর নিয়ে, বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে তাদের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। এটা ভয়াবহ, একটি জাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।'
এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা সংগ্রাম করছি। একটি গণতান্ত্রিক দলের পক্ষে যতটুকু সম্ভব নয় তার চেয়েও বেশি আমরা সংগ্রাম করছি, লড়াই করছি।
উপস্থিত বিএনপি নেতাকর্মীদের সন্তানদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, 'কখনো আশা হারাবে না। কখনো মনে করবে না যে সব কিছু শেষ হয়ে গেল। সব সময় মনে রাখতে হবে যে, এই গণতান্ত্রিক আন্দোলন, ভোটের আন্দোলন, নিজের খাওয়া-পরার আন্দোলন, এটি ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন এবং সেই আন্দোলনে আমরা বিজয়ী হবো।'
| সারা দেশে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই। |
খালেদা জিয়া আগের চেয়ে সুস্থ, বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন: ডা. এ জেড এম জাহিদ | বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগের চেয়ে সুস্থ বোধ করছেন এবং তিনি আপাতত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে বাসাতেই সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে থাকবেন বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
বুধবার রাতে তিনি বলেন, 'খালেদা জিয়া আজ দুপুরের পর থেকে একটু অসুস্থতা বোধ করছিলেন। ইফতারের পর মেডিকেল বোর্ড বেশ কয়েকবার তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে। সার্বিক দিক বিবেচনায় তারা মনে করছেন, তাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা প্রয়োজন। সেজন্য আপাতত তিনি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে বাসাতেই সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে থাকবেন।'
'যদি কোনো কারণে প্রয়োজন হয় তাহলে তাকে আবার হয়তো যে কোনো সময় হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হতে পারে। এখন দুপুরের চেয়ে, সন্ধ্যার চেয়ে, অনেকটাই তিনি সুস্থ বোধ করছেন', যোগ করেন তিনি।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী এ বি এম আবদুস সাত্তার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার হঠাৎ অবনতি হওয়ায় চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিৎসকরা।'
খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন।
গত বছরের ৯ আগস্ট হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
তার চিকিৎসায় গত ২৫ অক্টোবর মার্কিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল ঢাকায় আসে। তারা লিভারসিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার ট্রান্সজাগুলার ইন্ট্রাহেপ্যাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শান্ট (টিআইপিএস) প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।
উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে তার পরিবারের সদস্যরা সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে আসছেন।
কারাদণ্ড পাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসনকে ২০২০ সালে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঁচ মাসের বেশি সময় চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ১১ জানুয়ারি বাসায় ফেরেন তিনি।
| বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগের চেয়ে সুস্থ বোধ করছেন এবং তিনি আপাতত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে বাসাতেই সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে থাকবেন বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন। |
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি, নেওয়া হচ্ছে এভারকেয়ারে | বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী এ বি এম আবদুস সাত্তার দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, 'খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার হঠাৎ অবনতি হওয়ায় চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিৎসকরা।'
খালেদা জিয়াকে আজ রাতে হাসপাতালে নেওয়া হবে জানান তিনি। তবে কখন নেওয়া হতে পারে, সে সম্পর্কে জানা যায়নি।
খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঁচ মাসের বেশি সময় চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ১১ জানুয়ারি বাসায় ফেরেন তিনি।
| বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। |
বিএনপি করলে ছেলেমেয়েদের চাকরি হচ্ছে না, এটা বর্ণবাদ: মির্জা ফখরুল | বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি যারা করে তাদের ছেলেমেয়েদের চাকরির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না, দুঃসম্পর্কের আত্মীয়দের বিএনপি হিসেবে চিহ্নিত করে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এগুলো বর্ণবাদ ছাড়া কিছু নয়।
আজ বুধবার দুপুরে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিএনপির 'স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কমিটি' আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'বর্তমান বাস্তবতাকে সামনে নিয়ে, বিশ্ব-প্রেক্ষিতকে সামনে নিয়ে, সামগ্রিক অবস্থাকে সামনে নিয়ে আমাদের রাজনীতি, আমাদের কৌশল আবারও সেভাবে এগিয়ে নিতে হবে, যেভাবে গত দিনগুলোতে এগিয়েছি।'
তিনি বলেন, 'সবাইকে মনে রাখতে হবে, সংগ্রামের কোনো বিকল্প নেই, আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই এবং গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করা, ভোটের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করার কোনো বিকল্প নেই। সেজন্য আমাদের শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তুলে সেই সংগ্রামকে আরও বেশি জোরদার করতে হবে।'
দেশের অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, 'আমার কাছে মনে হয়, বাংলাদেশ শুধু ফ্যাসিস্টদের কবলে পড়েনি, বাংলাদেশ বর্ণবাদীদের কবলে পড়েছে। আমাদের বিএনপি যারা করে তাদের ঘর-বাড়ি পর্যন্ত দখল করে নেওয়া হচ্ছে, তাদের জমি দখল করে নেওয়া হচ্ছে, তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য দখল করে নেওয়া হচ্ছে। তাদের ছেলেমেয়েদের চাকরির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি দুঃসম্পর্কের আত্মীয়দের বিএনপি হিসেবে চিহ্নিত করে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এগুলো বর্ণবাদ ছাড়া কিছু নয়।'
'দেশটাকে তারা দুইভাগ করে ফেলেছে। এক ভাগ আওয়ামী লীগ, আরেকটা ভাগ হচ্ছে বিরোধী দল। এই অবস্থা তৈরি করে তারা দেশকে নিজেরাই সাম্প্রদায়িক একটা অবস্থা তৈরি করেছে। তারা আবার দাবি করে, সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে তাদের এই জেহাদ সবসময় অব্যাহত থাকবে,' বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, 'যারা সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করে, যারা নিজেরা গোষ্ঠী তৈরি করেছে, বর্ণবাদ সৃষ্টি করছে তাদের মুখে এ কথা শোভা পায় না। শুধু কথা বলে মানুষের সম্পদ লুট করে, মানুষকে সর্বস্বান্ত করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায় না।'
তিনি বলেন, 'প্রত্যেকদিন দেখছেন কী হারে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়ে যাচ্ছে, কীভাবে ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে, কীভাবে শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংস করা হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এমন একটা অবস্থা তৈরি করেছে যেখানে স্বেচ্ছাচারিতা, সেখানে বিভিন্ন রকমের অসামাজিক কার্যকলাপ ছাড়া সেখানে আর কিছু হচ্ছে না। যাদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে তাদের দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।'
'যাদের যোগ্যতা নেই তাদের ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। সব প্রতিষ্ঠানগুলোতে এমনকি প্রাইমারি স্কুলগুলোতেও সেই দলীয়করণ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এক কথায় পুরো দেশকে-রাষ্ট্রকে তারা গিলে ফেলেছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা সংগ্রাম করছি, লড়াই করছি,' বলেন তিনি।
'যা কিছু বাংলাদেশে শুভ কাজ হয়েছে, তা বিএনপি নেতারাই করেছেন' মন্তব্য করে তরুণ সমাজকে জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'চলমান আন্দোলনে এত ত্যাগের পরেও আমার কাছে মনে হয়েছে তরুণদের আরও শক্ত করে জেগে উঠতে হবে, যুবকদের জেগে উঠতে হবে। ২৮ তারিখের ঘটনার পর আমার কাছে মনে হয়েছে যে, আমরা তরুণদের বোধহয় সেভাবে নামাতে পারিনি।'
তিনি বলেন, 'আমার কাছে মনে হয়েছে মানুষকে জাগিয়ে তোলা এটা এখন আমাদের প্রধান কাজ। মানুষকে আবারও সংগঠিত করতে হবে, জনগণকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, নিজের অধিকারের জন্য, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের অবশ্যই রুখে দাঁড়াতে হবে।'
মির্জা ফখরুল বলেন, 'আজকের বাংলাদেশ ভিন্ন বাংলাদেশ, আজকের বিশ্ব ভিন্ন বিশ্ব, আজ যে ভূ-রাজনীতি আছে এই ভূ-রাজনীতি সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে পরিচালিত। স্বার্থ স্বার্থ স্বার্থ-নিজ নিজ দেশ তাদের স্বার্থ ছাড়া কোনো কিছু ভাবে না। সেখানে মানবাধিকার, অন্য দেশের প্রতি, সার্বভৌমত্বের প্রতি যে শ্রদ্ধা-সম্মান সব কিছু ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।'
'গাজায় প্যালেস্টাইনে দীর্ঘ ৭ মাস ধরে নির্বিচারে একটা গণহত্যা চলছে, অথচ তারই প্রতিবেশী মুসলিম দেশগুলো এখন পর্যন্ত সেভাবে কথা বলছে না, গোটা বিশ্ব সেভাবে কথা বলছে না। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটা রেজুলেশন পাস হয়েছে গতকাল। তারপরেও গাজায় বোমা মেরেছে, প্রায় ১৫ জন হত্যা করেছে। আজ ইউক্রেনে রাশিয়া আক্রমণ করেছে, সেখানে যুদ্ধ করছে প্রায় দুই বছর ধরে, সেখানে অসংখ্য লোক মারা যাচ্ছে। সারা বিশ্বের যারা বৃহৎ-ধনী দেশ তাদের একটাই লক্ষ্য, সেটা হচ্ছে তাদের স্বার্থ আদায় করা,' যোগ করেন তিনি।
সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ''আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না, তারা দেশের মানুষের অর্থনৈতিক অধিকারও বিশ্বাস করে না। ৭২-৭৫ এ তারা একবার একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল জাতীয় সংসদের ভেতরে দাঁড়িয়ে মাত্র ১১ মিনিটে এবং এবার এরা সারাদেশে অলিখিত বাকশাল কায়েম করেছে।'
তিনি বলেন, 'সারা বিশ্ব বলেছে যে, এই সরকার জগদ্দল পাথরের মতো বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের ওপর চেপে বসেছে এবং তাদের ওপরে জুলুম-অত্যাচার-নির্যাতন করছে। বাংলাদেশের বিরোধী দলের বিরুদ্ধে এক লাখ মামলা দেওয়া হয়েছে, ৫০ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।'
স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী ও সহপ্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
| বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি যারা করে তাদের ছেলেমেয়েদের চাকরির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না, দুঃসম্পর্কের আত্মীয়দের বিএনপি হিসেবে চিহ্নিত করে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এগুলো বর্ণবাদ ছাড়া কিছু নয়। |
‘বিএনপি সুপরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও মূল্যবোধ নস্যাতে অপতৎপরতা চালাচ্ছে’ | আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, স্বৈরাচারের গর্ভে জন্ম নেওয়া বিএনপি সুপরিকল্পিতভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, মূল্যবোধ ও গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি নেতাদের 'মিথ্যাচার ও দুরভিসন্ধিমূলক বক্তব্যে'র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে এই বিবৃতি প্রদান করা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিএনপিই এ দেশে গণতান্ত্রিক আদর্শ বাস্তবায়নের প্রধান প্রতিবন্ধক। বিএনপি নেতাদের উচিত ছিল তাদের অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের জন্য জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করা। অথচ তারা সেটা না করে বরাবরের ন্যায় দুরভিসন্ধিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে।'
তিনি বলেন, 'গণতন্ত্রের হত্যাকারীরা আজ যখন গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলে তখন বুঝতে হবে, তাদের ভিন্ন উদ্দেশ্য আছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য তাদের মায়াকান্না ছাড়া আর কিছু নয়। গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির কোনো দায়বদ্ধতা নেই।'
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'গণতন্ত্রের জন্য তাদের এই আহাজারি মূলত একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড, হাওয়া ভবন-খোয়াব ভবনের অধিপতি, দুর্নীতি-সন্ত্রাস ও দুর্বৃত্তায়নের বরপুত্র তারেক রহমানের দুঃশাসনের যুগে দেশকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য। এ দেশের গণতন্ত্রকামী দেশপ্রেমিক নাগরিক সমাজ এই অন্ধকারের অপশক্তির বিরুদ্ধে আজ ঐক্যবদ্ধ।'
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'স্বৈরাচার জিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন করেছিল। জাতিকে মিরপুর ও মাগুরা মার্কা উপ-নির্বাচন উপহার দিয়েছিল বিএনপি। নির্বাচনে কারচুপি করে ক্ষমতাদখলের পাঁয়তারায় আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন গঠন এবং ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার সৃষ্টি করেছিল বিএনপি।'
তিনি বলেন, 'অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে তখন বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের ভয়াবহ নজির স্থাপন করা হয়েছিল। ২০০১ পরবর্তী সময়কালে বিএনপি-জামাত জোট শাসনামলে ২১ হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল।'
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে বাংলাদেশ স্বপ্নের পথে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে মানবসভ্যতার ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করা হয়েছিল। পাশাপাশি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করা হয়েছিল।'
তিনি বলেন, 'একইভাবে হন্তারকের দল ৩ নভেম্বর জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছিল। সেদিন ঘাতকচক্র অসহায় নারী, শিশুকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল। সেদিন কোথায় ছিল গণতন্ত্র? কোথায় ছিল মানবাধিকার? ১৯৭৫ সালের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের পর খুনি জিয়ার হাতে জন্ম নেওয়া বিএনপি যখন গণতন্ত্রের কথা বলে, মানবাধিকারের কথা বলে—ইতিহাস তখন বিদ্রূপের হাসি হাসে।'
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ইতিহাসের নিষ্ঠুর সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে অসাংবিধানিক পন্থায় বন্দুকের নলের মুখে জাতিকে জিম্মি করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল। বিচারপতি সায়েমকে জোরপূর্বক অস্ত্রের মুখে সরিয়ে দিয়ে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি পদ দখল করেছিল।'
তিনি বলেন, '১৯৭৭ সালে হ্যাঁ-না ভোটের প্রহসনের নির্বাচনের নামে দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছিল স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান। জিয়ার তথাকথিত গণতন্ত্র ছিল কারফিউ মার্কা গণতন্ত্র। লাগাতার সামরিক শাসন বলবৎ রেখে জনগণের ওপর দুঃশাসনের স্টিমরোলার চালানো হয়েছিল।'
'স্বৈরাচার জিয়ার হাতে প্রতিষ্ঠিত বিএনপি এ দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে রুদ্ধ করার রাজনৈতিক উত্তরাধিকার ধারণ করে চলেছে' মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, '১৯৭৮ সালের ৩ জুন একইসঙ্গে সেনাপ্রধানের দায়িত্বে থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আয়োজন করে গণতন্ত্রকামী জনগণের সঙ্গে নির্মম তামাশা করেছিল স্বৈরাচার জিয়া। অবৈধভাবে একইসঙ্গে সেনাপ্রধান, প্রধান সামরিক আইন কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রপতির পদ দখল করে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করেছিল। স্বৈরাচার জিয়া পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করেছিল, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে করেছিল নির্বাসিত।'
| আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, স্বৈরাচারের গর্ভে জন্ম নেওয়া বিএনপি সুপরিকল্পিতভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, মূল্যবোধ ও গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। |
খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড আরও ৬ মাস স্থগিত করল সরকার | বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড আরও ৬ মাসের জন্য স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।
আগের মতোই দুই শর্ত বহাল রেখে নবমবারের মতো খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড স্থগিত করা হলো।
শর্ত দুটি হলো-খালেদা জিয়া তার বাসভবনে থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।
আজ বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ প্রজ্ঞাপন দিয়েছে।
জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ আবু সাঈদ মোল্লা দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
চলতি মাসের শুরুর দিকে খালেদা জিয়ার পরিবার তার কারাদণ্ড স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য এবং তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক দুই শর্তে তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর পক্ষে মত দেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ঢাকার বিশেষ আদালত খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন।
২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। মামলায় তার আপিল খারিজ করে পরের বছর ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট তার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে।
সরকার ছয় মাসের জন্য কারাদণ্ড স্থগিত করার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। এর পর আট দফায় তার মুক্তি বাড়ানো হয় এবং বর্তমানে তিনি গুলশানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
| বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড আরও ৬ মাসের জন্য স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। |
২৫ মার্চ বাঙালির ওপর আক্রমণকারীদের একজন জিয়াউর রহমানও: প্রধানমন্ত্রী | স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস কথা বলতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ২৫ মার্চ যে আক্রমণটা বাঙালির ওপর চালায়, সেই আক্রমণকারী একজন কিন্তু জিয়াউর রহমানও। সেটা হলো চট্টগ্রামে। এটাও ভুললে চলবে না।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এই সভার আয়োজন করে।
শেখ হাসিনা বলেন, 'আজ স্বাধীনতার ৫৩ বছর আমরা পার করেছি। এই ৫৩ বছরের মধ্যে ২৯টা বছরই এ জাতির জন্য ছিল দুর্ভাগ্যের বছর।'
যুদ্ধ পরবর্তী পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, 'আজকে যেমন আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, কেউ বলছে গণতন্ত্রই নাকি নাই। কেউ বলছে বাংলাদেশের মানুষের নাকি কিছুই হয়নি, কোনো উন্নতিই হয়নি। যারা এসব কথা বলে যাচ্ছে, এ ধরনের কিছু কর্মকাণ্ড স্বাধীনতার পরপর আমরা দেখেছি।'
তিনি বলেন, 'একটি সদ্য স্বাধীন দেশ, এই দেশটি ছিল পরাধীন। এ দেশের মানুষ ছিল শোষিত-বঞ্চিত। যেখানে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ মানুষই দরিদ্রসীমার নিচে বাস করে। পরনে ছিন্ন কাপড়, পেটে ক্ষুধার জ্বালা, বাসস্থান নেই, চিকিৎসা নেই। সেই একটি জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে, মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় এনে দেওয়া; একমাত্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের মতো বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ছিল বলেই সম্ভব।'
ভারতসহ সব মিত্র রাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, 'যে কোনো যুদ্ধে যে কোনো বিপ্লবে মিত্র শক্তির সহায়তা প্রয়োজন হয়। কাজেই আমরাও সেই সহায়তা পেয়েছিলাম। আবার পেয়েছি অনেক বড় বড় দেশের বৈরিতা, যারা পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী যখন আমাদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে, গণহত্যা চালিয়েছে, তাদের সমর্থন দিয়েছিল, অস্ত্র দিয়েছিল, সাহায্য করেছিল। তবে সেসব দেশের নাগরিকদের সহায়তা, তাদের সমর্থন বাংলাদেশ পেয়েছে।
'আপনারা জানেন, আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর, যারা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছে, সমর্থন দিয়েছে, আমাদের শরণার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমরা তাদের কিন্তু সম্মাননা দিয়েছি। আমরা বাঙালি, আমরা কৃতজ্ঞ জাতি। আমাদের যদি কেউ সহযোগিতা করে, আমরা তাদের প্রতি সম্মান দেখাতে জানি, আমরা সেটাই প্রমাণ করেছি। বোধ হয় বিশ্বে একমাত্র বাংলাদেশ এভাবে মিত্র শক্তিকে সব ধরনের সম্মান দিয়েছে। আমরা মনে করি, সম্মান দিয়ে আমরাই সম্মানিত হয়েছি,' যোগ করেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, '১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সাল, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এ দেশে আমি দেখেছি ইতিহাস বিকৃতির পালা। তার থেকেও দুঃখের বিষয় হলো, একটি সদ্য স্বাধীন দেশ, একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলতে কত সময় লাগে? আমাদের দেশে যুদ্ধ যখন হয়েছে, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আক্রমণ চালিয়েছে, তখন এ দেশে কিছু দালাল শ্রেণি জুটে গিয়েছিল। যারা শুধু তাদের পাশেই থাকেনি, গণহত্যা, আমাদের মা-বোনদেরকে ধরে নিয়ে পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে তুলে দেওয়া থেকে শুরু করে সব ধরনের অপকর্ম করেছিল, যেন এই যুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষে বিজয় অর্জন না করে। ঠিক স্বাধীনতার পর পর আমরা দেখলাম যে, তাদের সঙ্গে আরও কিছু লোক যুক্ত হয়ে গেল। এমনকি দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় যে, আমাদের সাথে যারা একইসঙ্গে কাজ করেছে, যুদ্ধ করেছে, তাদের মধ্যেও একটি বিভক্তি সৃষ্টি করা হলো। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে কিন্তু সময় দেয়নি—শুরু হয়ে গেল সমালোচনা, এটা নাই, ওটা নাই। কেউ এটা চিন্তা করতে চায়নি যে, যুদ্ধরত একটা দেশে কী অবস্থা হতে পারে।'
শেখ হাসিনা বলেন, 'অনেকেই দেখি অনেক বড় বড় কথা বলেন। তারা নাকি গণতন্ত্র খুঁজে বেড়ান। ২৫ মার্চ নিয়ে গতকালকেই শুনছিলাম বিএনপির এক নেতা বললেন যে, ২৫ মার্চ নাকি আওয়ামী লীগের সব নেতারা পালিয়ে গিয়েছিল। তাহলে যুদ্ধটা করল কে? বিজয়টা আনল কে? আমি জিজ্ঞাসা করি, এই কথাটা যে বিএনপির এক নেতা বললো, ১৯৭০ এর নির্বাচনে জাতীয় পরিষদ এবং প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন সদস্যরাই কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠন করে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ এই সরকার গঠন করে ১৭ এপ্রিল এখন এটা মেহেরপুর, মুজিবনগর; সে সময় ছিল কুষ্টিয়ার একটি মহকুমা। সেই জায়গায় তারা শপথ নিলেন এবং শপথ নিয়ে যুদ্ধ পরিচালনা করলেন এই সরকার। যেহেতু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, যে ঘোষণার সাথে সাথে তাকে কিন্তু গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হলো। উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে সরকার পরিচালনা করেন। আর সেই সরকারের অধীনেই এ দেশে স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'যুদ্ধের ক্ষেত্রে আজকে যে দলটি আজকে বড় বড় কথা বলে যাচ্ছে যে, ২৫ মার্চ আওয়ামী লীগ সব নাকি পালিয়ে গেল, তাহলে এই সরকার গঠন করে যুদ্ধ পরিচালনা করল, শুধু পরিচালনা না সেখানে যে সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলা হলো, বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশকে ভাগ করা হলো এবং একেকটা সেক্টরে যাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হলো, সেখানে যিনি দায়িত্বে ছিলেন, তিনি আহত হওয়ার পর জিয়াউর রহমান সেখানে দায়িত্ব পায়।'
তিনি বলেন, 'জিয়াউর রহমান তো সেখানে একটা বেতনভুক্ত কর্মচারী হিসেবে কাজ করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বেতনভুক্ত কর্মচারী ছিল জিয়াউর রহমান এ কথা নিশ্চয়ই তাদের ভুলে গেলে চলবে না। এটাও ভুললে চলবে না যে, স্বাধীনতার পর; জিয়াউর রহমান ছিল একটা মেজর। জিয়াউর রহমানের জন্ম হলো কলকাতায়। তার পরিবার, যখন পাকিস্তান-হিন্দুস্তান হয়ে যায়, পাকিস্তানে যখন ফিরে আসে, সে কিন্তু এই পূর্ববঙ্গে আসেনি। তারা গিয়েছিল করাচিতে। জিয়াউর রহমান সেখানেই পড়াশোনা করে। সেখানেই আর্মিতে যোগ দেয়। সেখান থেকে কার্যাদেশ পেয়ে সে পূর্ববঙ্গে এসেছিল দায়িত্ব পালন করতে। সামরিক অফিসার হিসেবে সে এখানে দায়িত্ব পালন করতো কিন্তু তার মনে তো ওই পাকিস্তানটাই রয়ে গেছে। আর তার প্রমাণও আছে।
'সেই সময় জিয়াউর রহমান যে মেজর থেকে মেজর জেনারেলটা হলো, এ প্রমোশনগুলো একে একে কে দিয়েছে? এটাও তো আওয়ামী লীগ সরকার দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দিয়েছে। এই অকৃতজ্ঞরা সেটাও বোধ হয় ভুলে যায়,' বলেন শেখ হাসিনা।
স্বাধীনতার ঘোষণার ইতিহাস তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, 'এই ইতিহাসকে পঁচাত্তরের পর তো বিকৃত করা হয়েছে। বিকৃত করে একটা ভিন্ন ইতিহাস সামনে আনার চেষ্টা করা হয়েছে যে, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে গেল একটা মেজর কোন ড্রামের ওপর দাঁড়িয়ে ফুঁক দিলো আর অমনি বাঁশি ফুঁক দিলেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে গেল। এইভাবে একটা দেশ স্বাধীন হয় না। তাহলে তো বাংলাদেশে ইতিহাস অন্য রকম হতো। এই ক্ষেত্রে আমি বলবো যে, এই যে ইতিহাস বিকৃত করে এখনো তারা কিন্তু ভাঙা রেকর্ডের মতো বলেই যাচ্ছে। ওদের কখনো আক্কেল ঠিকানা হবে না। আর না হওয়ার কারণও আছে। এখন তারা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে। এর মধ্যে অনেকেই তো...মুক্তিযুদ্ধে তারা কে ছিল? কোথায় ছিল? আজকে যিনি বলেছেন যে, ২৫ মার্চ সব আওয়ামী লীগ পালিয়ে গিয়েছিল, তার বাবা কে ছিল?'
তিনি বলেন, 'স্বাধীনতার পর ৭৪ সালে যে দুর্ভিক্ষ হয়, তখন খাদ্য সচিব ছিল, এই খাদ্য সচিব বেঈমানি করে ভ্রান্ত তথ্য দিয়ে এই দুর্ভিক্ষ ঘটিয়েছিল। যার পুরস্কার পেয়েছিল জিয়াউর রহমান যখন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে। তাকে উপদেষ্টা বানিয়েছিল মন্ত্রীর মর্যাদায় এই মঈন খানের বাবা, তার নাম হলো মোমিন খান। সে ছিল খাদ্য সচিব। পিএল ফরেটের ওপর আমরা নির্ভরশীল। সেই পিএল ফরেট জাহাজ, নগদ টাকা দিয়ে কেনা জাহাজ। সেই জাহাজ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। খাবার আসতে দেয়নি বাংলাদেশে। দুর্ভিক্ষ ঘটানো হয়েছিল। দুর্ভিক্ষ কিন্তু বাংলাদেশে ছিলই!'
আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ দেশের মানুষের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, 'সেই দল ক্ষমতায় থাকলেই যে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয় তা তো আজ প্রমাণিত সত্য। যখন এই ক্ষমতা দখলকারীরা, অর্থাৎ রেডিও-টেলিভিশনে ঘোষণা দিয়ে আমি রাষ্ট্রপতি হলাম। সেই হলাম পার্টি যখন ক্ষমতায় ছিল এ দেশের মানুষের ভাগ্যে কী ছিল? ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অশিক্ষা, চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অস্ত্রের ঝনঝনানি, সেশন জট, এই তো অবস্থাটা ছিল। আজকে যারা প্রশ্ন করেন, আওয়ামী লীগ কোথায় ছিল? আমি জিজ্ঞেস করি, আপনারা কোথায় ছিলেন? সেটাও একটু বলেন। জবাব দেন।
'কোথায় ছিল তাও আমি বলি, ২৫ মার্চ পাকিস্তান হানাদার বাহিনী যখন এখানে গণহত্যা শুরু করে, তারা কিন্তু চট্টগ্রামেও হত্যাকাণ্ড শুরু করেছিল। যারা ব্যারিকেড দিচ্ছিল জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে, তাদের ওপর গুলি চালিয়েছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। আর চট্টগ্রামে সেই সেনাবাহিনীর দায়িত্বে জিয়াউর রহমান ছিল এবং জিয়াউর রহমানও যারা সেই সময় ব্যারিকেড দিয়েছে তাদের ওপর গুলি চালিয়েছে। শুধু তাই না, সোয়াত জাহাজ এসেছে পাকিস্তান থেকে অস্ত্র নিয়ে, সেই অস্ত্র খালাস করতে গিয়েছিল জিয়াউর রহমান। সেখানে এই যে সংগ্রাম পরিষদের নেতা ও অন্যান্য সাধারণ জনগণ, তারা তাকে পথে আটকায়। তাকে যেতে দেয়নি, বাধা দিয়েছিল এবং সেখান থেকেই ধরে নিয়ে আসে। সেই সময় আমাদের নেতারা; এখন তো অনেকেই বেঁচে নেই! তারা এখনো সেটা স্মরণ করে,' বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, 'কাজেই পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ২৫ মার্চ যে আক্রমণটা বাঙালির ওপর চালায়, সেই আক্রমণকারী একজন কিন্তু জিয়াউর রহমানও। সেটা হলো চট্টগ্রামে। এটাও ভুললে চলবে না।'
তিনি বলেন, 'যখন কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে সর্বপ্রথম ২৬ মার্চ দুপুর ২টা-আড়াইটার সময় মান্নান সাহেব, চট্টগ্রামের সেক্রেটারি ঘোষণা দেওয়া শুরু করে। একে একে আমাদের যারা নেতা সবাই ঘোষণা পাঠ করে। সে সময় জহুর আহমেদ সাহেব বলেন, আমাদের একজন মিলিটারি লোক দরকার। তাহলে আমরা যে যুদ্ধ করছি, সেই যুদ্ধ যুদ্ধ হবে। তখন মেজর রফিককে বলা হয়, তিনি তখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে আটকানোর জন্য অ্যাম্বুস করে বসে আছেন। বলছেন, আমি এখান থেকে নড়লে এই জায়গাটা ওরা দখল করে নেবে। ওই সময় জিয়াউর রহমানকে ধরে আনা হয় এবং তাকে দিয়ে ২৭ তারিখ সন্ধ্যার পরে সে জাতির পিতার পক্ষে ঘোষণাটা দেয়। পাঠ করে। কেউ যদি কিছু বলে, আমরা আওয়ামী লীগ তাকে খাটো করে দেখেনি। জিয়াউর রহমান একজন মেজর, সে যখন বলছে মানুষের মধ্যে যুদ্ধ যুদ্ধ ভাবটা আসবে, এই উদ্দেশ্য নিয়েই একজন সামরিক অফিসারকে দিয়ে এই ঘোষণা পাঠ করানো হয়েছিল। সেটাকেই এখন একেবারে ঘোষক হিসেবে; হ্যাঁ, রেডিওর ঘোষক, টেলিভিশনের ঘোষক, আমাদের এই মিটিংয়েরও তো ঘোষক আছে, তাই না? ঘোষক তো সেই ঘোষক। কাজেই এটা নিয়ে বড়াই করার তো কিছু নেই! তারা এটা (নিয়ে) বড়াই করে যাচ্ছে।'
তিনি বলেন, 'আপনারা জানেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আমাদের গেরিলারা জেনারেল মঞ্জুর, হায়দার, খালেদ মোশারফসহ যাদের পরিবার, জিয়াউর রহমানের পরিবারগুলো উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া। খালেদা জিয়া চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসে। ঢাকা এসে পুরোনো পল্টনে তার বোনের বাসায় ওঠে। গেরিলারা তাদের সাথে যোগাযোগ করে। এমনকি একটি টাকাও দেয়। যে তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য লোক পাঠানো হয়েছে। এ রকম উদ্ধার করা হয়। খালেদ মোশারফের বাড়ি থেকেও তার পরিবারকে উদ্ধার করা হয়েছিল। শুধু একটি মেয়ে যায়নি, বাকি সবাই গিয়েছিল।'
শেখ হাসিনা বলেন, 'খালেদা জিয়া তাদের বলেছিল, আজকে আমি যাব না, আপনারা পরের দিন আসেন। পরের দিন এসে দেখে কেউ নাই। কোথায়? খালেদা জিয়া চলে গেছে ক্যান্টনমেন্টে দুই ছেলেকে নিয়ে। ক্যান্টনমেন্টে দুই ছেলেকে নিয়ে বহাল তবিয়তে সে আছে। প্রশ্নটা হলো, সেখানে যে চলে গেল কীসের ভরসায়? এখানে আমি একটা কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আসলাম বেগ সে সময় সামরিক অফিসার বাংলাদেশে কর্মরত ছিল, পরে পাকিস্তানে বোধ হয় সেনাবাহিনীর প্রধানও হয়েছিল সে। এই আসলাম বেগ একটা চিঠি লিখেছিল জিয়াউর রহমানের কাছে। সেই চিঠিতে জিয়াউর রহমানের কার্যক্রমকে সে সন্তুষ্ট জানিয়েছিল। যে তার কার্যক্রমে সে সন্তুষ্ট, তাকে ভবিষ্যতে আরও কাজ দেওয়া হবে এবং জিয়ার পরিবার—তার স্ত্রী ও দুই ছেলে যে ভালোভাবে আছে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে সেই কথাটাও চিঠিতে জানিয়েছে। চিঠিটার কপিটা ছিল, পার্লামেন্টেও পাঠ করা হয়েছে। এটা ডকুমেন্ট হিসেবে আছে।'
শেখ হাসিনা প্রশ্ন রাখেন, 'যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে ফেলল, তার বউ ছেলেকে হেফাজতে রেখে দিলো পাকিস্তানিরা আর আসলাম বেগ চিঠিতে জানাল জিয়ার কার্যক্রমে তারা সন্তুষ্ট, কেন সন্তুষ্ট জানেন? যতগুলো সেক্টরে যুদ্ধ হয়েছে, আপনারা হিসাব করে দেখেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সব থেকে বেশি হত্যা করা হয়েছে যেটার দায়িত্বে ছিল জিয়াউর রহমান। সব থেকে বেশি হতাহত ছিল সেখানে।'
'আরেকটি কথা না বলে পারছি না, দেখলাম বিএনপির এক নেতা চাদর খুলে আগুন দিচ্ছে ভারতীয় পণ্য ব্যবহার করবে না। এরপর আবার দেখা গেল, কিছু চাদর কিনে এনে পোড়ানো হলো। আচ্ছা শীতকাল তো চলে গেছে এখন আর চাদর পোড়ালে আর কী আসে-যায়। আমার প্রশ্ন, যে নেতারা বলছেন ভারতীয় পণ্য বর্জন করেন, তাদের বউদের কয়খানা ভারতীয় শাড়ি আছে? তাহলে বউদের কাছ থেকে সেই শাড়িগুলো এনে কেন পুড়িয়ে দিচ্ছে না? আপনারা সবাই একটু এই কথাটা বিএনপি নেতাদের জিজ্ঞাসা করেন,' বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
শেখ হাসিনা বলেন, 'বিএনপি নেতাদের বলব, যারা যারা ভারতীয় পণ্য বর্জন করবেন সবার বাড়িতে গিয়ে তাদের বউরা যেন কোনো মতে কোনো ভারতীয় শাড়ি না পরে; আলমারিতে যে কয়টা শাড়ি আছে সব এনে যেদিন ওই অফিসের সামনে পোড়াবেন সেদিন বিশ্বাস করব যে, আপনারা সত্যিকার ভারতীয় পণ্য বর্জন করলেন। আমাদের দেশে গরম মসলা, পেঁয়াজ, ভারত থেকে আমরা পেয়াজ আমদানি করছি, রসুন-আদা, মিজোরাম থেকে আমরা আদা আনি, মসলাপাতি, আদা ভারত থেকে যা কিছু আসছে, তাদের কারও পাকের ঘরে যেন এই ভারতীয় মসলা দেখা না যায়। তাদের রান্না করে খেতে হবে এইসব মসলা বিহীন। কাজেই এটা তারা খেতে পারবেন কি না সেই জবাবটা তাদের দিতে হবে।'
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'আপনারা রঙ-ঢঙ-সঙ করতে ওস্তাদ, এটা আমরা আগেও দেখেছি। বাস্তব কথায় আসেন, আপনারা এই পণ্যগুলো সত্যিকার বর্জন করছে কি না সেই কথাটাই আমরা জানতে চাই।'
| স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস কথা বলতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ২৫ মার্চ যে আক্রমণটা বাঙালির ওপর চালায়, সেই আক্রমণকারী একজন কিন্তু জিয়াউর রহমানও। সেটা হলো চট্টগ্রামে। এটাও ভুললে চলবে না। |
‘বয়কট ইন্ডিয়া’ প্রচারণা: দ্বিধায় বিএনপির শীর্ষ নেতারা | ভারতীয় পণ্য বর্জনের চলমান প্রচারণায় বিএনপির এখনই সম্পৃক্ত হওয়া উচিত হবে না বলে মনে করছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।
তাদের ভাষ্য, এই প্রচারণাকে সমর্থন করার জন্য অভ্যন্তরীণ চাপ থাকলেও বিএনপি এখনো এ বিষয়ে তাদের অবস্থান চূড়ান্ত করতে পারেনি।
শীর্ষ নেতারা মনে করছেন, ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থেকে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টসহ কিছু মানুষ জানুয়ারির শেষদিকে এই প্রচারণার ডাক দেন।
সোমবার রাতে বিএনপি স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল মিটিংয়ে অংশ নেওয়া এক সদস্য বলেন, এই প্রচারণার সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু এখন বিএনপি এই প্রচারণায় অংশ নিলে ব্যাপারটিকে ভিন্নভাবে নেওয়া হবে এবং শেষ পর্যন্ত হিতে বিপরীত ফল বয়ে আনতে পারে।
তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনের পর দলের অভ্যন্তরে ভারতবিরোধী মনোভাব যে তুঙ্গে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য এই প্রচারণার সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে বিষয়টি নিয়ে একটি কৌশল প্রণয়নের পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, 'দলের পরবর্তী বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। এরপর দলের অবস্থান পরিষ্কার হবে।'
এই বিষয়ে মন্তব্য জানতে গতকাল বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্তত তিনজন সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে দ্য ডেইলি স্টার। কিন্তু বিষয়টির সংবেদনশীলতা বিবেচনা করে কেউই তাদের নাম প্রকাশ করতে চাননি।
গত ২০ মার্চ বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই প্রচারণার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করায় বিষয়টি আলোচনায় আসে। নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় ভারতীয় শাল ছুড়ে ফেলেন তিনি।
পরে বিএনপির আরও কয়েকজন নেতা ভারতীয় পণ্য বর্জনের প্রচারণার পক্ষে কথা বলেন।
সোমবারের বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির কোনো সদস্যই রিজভীর বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেননি। কিন্তু একজন সদস্য বৈঠকে বলেন, রিজভী যেভাবে শাল ছুড়েছেন, তা শোভনীয় নয়।
তখন স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য বলেন, রিজভী পরে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিএনপি নেতা হিসেবে নয়, তিনি ব্যক্তিগতভাবে শাল ছুড়েছেন।
কমিটির আরেক সদস্য সভায় বলেন, (বাংলাদেশ বিষয়ে) ভারতের পদক্ষেপ নিয়ে বিএনপির সমালোচনা করতে হবে। কিন্তু সেটা করতে হবে পরিকল্পিত ও যথাযথভাবে।
বিএনপির আরেক নেতা বলেন, জনগণ যদি ভারতীয় পণ্য বর্জন করা শুরু করে, তাহলে দলের কিছু করার নেই এবং দল এক পর্যায়ে জনগণের দাবি উপেক্ষা করতে পারবে না।
'কিন্তু ভারতীয় পণ্য বয়কটের প্রচারে সমর্থন করা দলের পক্ষে বুদ্ধিমানের কাজ হবে না', বৈঠকে তিনি বলেন।
আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে বিএনপি এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। স্থায়ী কমিটির সব সদস্যের পর্যবেক্ষণ, দলটির নির্বাচন থেকে দূরে থাকা উচিত।
বিএনপির কয়েকজন নেতা অবশ্য বলছেন, কোনো ব্যক্তিকে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা দেওয়া উচিত নয়।
| ভারতীয় পণ্য বর্জনের চলমান প্রচারণায় বিএনপির এখনই সম্পৃক্ত হওয়া উচিত হবে না বলে মনে করছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। |
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বর্তমান সরকার ব্যবসা করছে: জি এম কাদের | স্বাধীনতার চেতনা, মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বর্তমান সরকার ব্যবসা করছে বলে মন্তব্য করেছেন সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বনানী কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বাস্তবায়ন করেছিলেন, এর আগে কেউ করেনি মন্তব্য করে কাদের বলেন, 'স্বাধীনতার যে মূল চেতনা এবং যাদের মূল্যায়ন করা দরকার; মুক্তিযোদ্ধাদের উনি তালিকা করেছিলেন। উনি আমাকে একদিন দুঃখ করে বলেছিলেন যে, অনেক খুঁজে খুঁজে গ্রামে-গঞ্জে বিরাট টিম পাঠিয়ে আমি মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজে খুঁজে বের করেছি। নাম্বারটা মনে নাই, ৭০ হাজার বা কত হাজার উনি করতে পেরেছিলেন। তার চেয়ে বেশি উনি করতে পারেন নাই। উনি একদিন দুঃখ করে বলেছিলেন, উনি মারা যাওয়ার কিছু দিন আগে যে, এত মুক্তিযোদ্ধার তালিকা আসছে কোথা থেকে!
'আমি তো মুক্তিযুদ্ধে পরে গ্রামে গ্রামে মানুষ পাঠিয়ে, বিভিন্নভাবে, আমাদের এজেন্সিগুলোকে পাঠিয়ে খুঁজে খুঁজে বের করে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করেছিলাম। এখন তো দেখছি তার চেয়ে তিনগুণ সংখ্যা মুক্তিযোদ্ধার। সেই মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ৫০ বছর হয়নি, ৫১ বছরের বেশি স্বাধীনতার—সে মুক্তিযোদ্ধা। এগুলো চলছে এবং এগুলোকে বাতিল করতে পারবেন না। আদেশ করা হয়েছে এমনভাবে যে এটা বাতিলযোগ্য নয়। (১৯৭১ সালে) তিন বছর বয়স যার, সে মুক্তিযোদ্ধা। এক বছর বয়স, সে মুক্তিযোদ্ধা। এগুলো কি মুক্তিযুদ্ধে চেতনা? এগুলো কি স্বাধীনতার চেতনা,' প্রশ্ন রাখেন তিনি।
কাদের বলেন, 'এগুলো করা হয়েছে বৈষম্য সৃষ্টির জন্য। এরশাদ সাহেব এটা দূর করার চেষ্টা করেছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রতিটি জেলায় অফিস করার জায়গা দিয়েছিলেন, অফিস করে দিয়েছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ করেছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চাকরি-বাকরির ব্যবস্থা করেছিলেন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তানদের ভাতা দেওয়া শুরু করেছিলেন উনি। কিন্তু উনি উনাদের দিয়ে উনার দলীয় কাজ করান নাই। উনি দলীয়করণ করেন নাই মুক্তিযোদ্ধাদের। বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের দলীয়করণ করেছে।'
তিনি বলেন, 'তারা (আওয়ামী লীগ) নিজেদের লোককে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছেন এবং তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে একটি সুবিধাবাদী গোষ্ঠী তৈরি করেছেন। তারা বিভিন্ন জায়গায় সরকারের জন্য লাঠি ধরছে। লাঠিয়াল হয়ে গেছে। এটা তো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হতে পারে না!'
বৈষম্য ও লুণ্ঠন এখানো আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'আগে পাকিস্তান নিয়ে যেত। এখন লুণ্ঠন হচ্ছে না? খবরের কাগজ দেখেন। সব জায়গায় দেখেন। দেশের ব্যাংক খালি হয়ে যাচ্ছে, আর টাকা লুণ্ঠন হচ্ছে। হিসাবহীনভাবে।'
কাদের বলেন, 'এই স্বাধীনতার যেগুলো কথা ছিল, যে চেতনা ছিল, সেটা নিয়ে ব্যবসা করছে আমাদের বর্তমান সরকার। স্বাধীনতার চেতনা, মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধ—এগুলো নিয়ে বর্তমান সরকার ব্যবসা করছে। নিজেদের স্বার্থে এগুলোকে ব্যবহার করছে।'
তিনি বলেন, 'শিকড় থেকে দেখছেন না। গাছের কাণ্ড থেকে ফল দেখছেন। শিকড় না থাকলে তো গাছ হতো না, আর গাছ না থাকলে ফল হতো না। সেই শিকড়কে ভুলে গেছেন। কত মানুষ জীবন দিয়েছে। কত মানুষের কত ত্যাগ তিতিক্ষা আছে। এই মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রাম তো আজকে থেকে শুরু হয়নি! ভাষা আন্দোলন; সেখানেও তারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। কীসের মুক্তি? বৈষম্য থেকে মুক্তি। তারপর স্বাধীনতার সময় যখন দেখা গেল, আমরা স্বায়ত্ত শাসন পাচ্ছি না, বৈষম্য থেকে মুক্তি পাচ্ছি না, তখন মানুষ অস্ত্র ধরল—দেশ চাই, আমার দেশ। যেটা হবে আমার দেশ, প্রজাতন্ত্র। আমি প্রজা, আমাদের দেশ, আমার ক্ষমতা থাকবে। সকল ক্ষমতার উৎস হবো আমি, আমি দেশ চালাব। তাহলে আমাকে কেউ বৈষম্য করতে পারবে না। এটিই ছিল মানুষের আকাঙ্ক্ষা। এটি ছিল চেতনা মানুষের। সেই চেতনা কোথায়?
'দেশের সকল ক্ষমতার উৎস যদি জনগণ হয়, তাহলে তার সর্বোচ্চ ক্ষমতা হলো আমি তোমাকে নির্বাচিত করলাম, আমি তোমাকে নির্বাচিত করলাম না। এই ক্ষমতা কি বর্তমান জনগণের আছে? আমি চেয়েছিলাম বৈষম্যমুক্ত একটি সমাজ গঠন করব। সেই সমাজে আমি সবাইকে জবাবদিহি করব। রাজা থেকে শুরু করে প্রজা কেউ এর বাইরে যেতে পারবে না। যে যেটা করবেন তার জন্য জবাবদিহি করতে হবে,' বলেন তিনি।
কাদের বলেন, 'বিভিন্ন জায়গায় অপকর্ম হচ্ছে, সুশাসনের অভাব; অর্থ হলো আমাকে জবাবদিহি করতে হচ্ছে না। সরকার কেন করছেন না, জিনিসপত্রে দাম কেন কমাবেন না, কেন কমাতে চাইলেও করতে পারছেন না, কেন আগুন বন্ধ করতে পারছেন না, এখনো কেন ভেজাল বন্ধ করতে পারছেন না? কেননা তারা করছেন না। কেন করছেন না? কারণ করবার প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন নেই কেন? আপনাকে তো জবাবদিহি করতে হবে না! না করলে তো আপনাকে শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা কোথাও করা যাচ্ছে না। সরকারকে সরকার থেকে সরিয়েও দেওয়া যাচ্ছে না। কাজেই শুনবার প্রয়োজন কী? শুনবার প্রয়োজন তো নেই। তাহলে আমরা কী অর্জন করলাম? আমরা কী পেলাম এই স্বাধীনতা থেকে এবং কোন দিকে যাচ্ছি সামনে?'
বিরোধী দলীয় এই নেতা আরও বলেন, 'জনগণের দেশ হবে, বৈষম্যমুক্ত দেশ হবে, দেশে আইনের শাসন থাকবে। আইনের চোখে সবাই সমান হবে। সবচেয়ে বড় যে জিনিসটা আমরা গণতন্ত্র থেকে পাই সেটা হলো সবাই আইনের চোখে সমান হবে। আমাদের দেশে আমরা এই জিনিসটি করতে পারছি না। একটি স্তরের পরে আমরা কথাও বলতে পারি না। সরকারের বিরুদ্ধে আমরা কোনো কথা বলতে গেলে, তাদের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে বিভিন্ন ধরনের মামলা হয়। একেবারে আইন তৈরি করা হয়েছে, যে আইনে (মামলা) এটা করা যায়। কাজেই বৈধভাবে আমাদের দাবিয়ে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটা কি স্বাধীন হলো? সেই দেশ স্বাধীন দেশ?'
তিনি আরও বলেন, 'সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে। দেশের শত্রু, দেশদ্রোহিতার মামলা। একজন বিভিন্নভাবে দুর্নীতি করছে, দুর্নীতি ধরতে যান, বলবে তোমাকে ডকুমেন্টসহ, পেপারসহ দিতে হবে, না হলে তোমাকে জেল দেওয়া হবে। এভাবে আস্তে আস্তে মানুষের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে মানুষকে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। যে জন্য, যে আকাঙ্ক্ষায় মানুষ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল, যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিল, সেই আকাঙ্ক্ষা ছিল আমার নিজের একটি দেশ হবে। যেখানে আমি বৈষম্যের শিকার হবো না। যেখানে আমরা সকলে সমান থাকব। জবাবদিহিতার মধ্যে থাকব। সেই সমাজে আমি বসবাস করতে চাই, যার জন্য আমি জীবন দিতে গেছি। সেই সমাজ হয়নি। সেই সমাজের দিকে সামনে আমরা যাচ্ছি না, এটিই হলো দুর্ভাগ্যের বিষয়।
'আমি আস্তে আস্তে যাচ্ছি, হয়তো এখন না যাই ১০ বছর পরে যাব-২০ বছর পরে যাব—যদি সঠিক পথে যাই। যদি উল্টা পথে যাই, তাহলে প্রতি মুহূর্তে তো আমি দূরে সরে যাচ্ছি! আমার কাছে এটিই হলো দুঃখ। আমাদেরকে পথ ঠিক করতে হবে। আমাকে প্রথম বলতে হবে আমি প্রজাতন্ত্র। প্রজাদের শাসন করতে দিতে হবে, তাদেরকে ভোট দিতে দিতে হবে, তাদের নিজের নেতা নির্বাচিত করতে দিতে হবে। দেশ শাসনে তাদের জবাবদিহিতা করার ক্ষমতা দিতে হবে, তাহলেই তো আমি প্রজাতন্ত্র হলাম। তার পরে আমি দেখব কে খারাপ কাজ করছে, কে করছে না। যার দেখার দায়িত্ব সে করছে কি করছে না। কেন করছে না? না করলে সে থাকবে নাকি থাকবে না। সেই ক্ষমতা যখন থাকবে, তখন আমি সত্যিকার অর্থে স্বাধীনতার সুফল এবং সত্যিকার অর্থে স্বাধীনতার চেতনা আমি বাস্তবায়ন করব,' যোগ করেন তিনি।
সরকার বৈষম্য সৃষ্টি করেছে অভিযোগ করে কাদের বলেন, 'সুবিধাবাদী ২২ পরিবার থেকে ২২ হাজার পরিবার হয়েছে। টাকার অভাব নেই। পাঁচ টাকার জিনিস ৫০০ টাকায়, পাঁচ হাজার টাকায় কেনার লোক আছে। দেশ তো ধনী দেশ, এটা বলে বেড়ানো হচ্ছে। রাস্তায় হাজার হাজার গাড়ি, এটা বলে বেড়ানো হচ্ছে। কীসের গরিব দেশ! ওই লোকের জন্য গরিব দেশ নয়। দেশের বেশির ভাগ মানুষের জন্য গরিব দেশ। বেশির ভাগ মানুষ এখন অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছে। বেশির ভাগ মানুষ কালকে কীভাবে থাকবে তা জানে না। বেশির ভাগ মানুষ কালকে বেঁচে থাকবে কি না জানে না। বেশির ভাগ মানুষ তার সহায়-সম্পত্তি থাকবে কি না তা জানে না। আপনার বাড়ি-ঘর আজকে ঠিক আছে, কালকে থাকবে কি না কেউ জানে না। বাড়িটা কেউ দখল করে যদি নিয়ে যায় এবং তারপর আপনি কোথাও বিচার করতে গেলে পাবেন না। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, এগুলো নিয়ে অনেকে আমার কাছে অভিযোগ করতে আসে যে, বাড়ি-ঘর দখল হয়ে গেছে। এখন কেস করতে যাচ্ছি, কেউ কেস নিচ্ছে না। উকিলরা ভয় করে, কেননা এখানে প্রভাবশালী মহল জড়িত।'
রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের যে চরিত্র থাকার কথা সেখান থেকে তারা দূরে সরে আসছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'আমরা কখনোই কেউ বিপ্লব চাই না, আমরা সহিংসতা চাই না। আমরা চাই না, যুক্তিতর্কের বাইরে গায়ের জোরে কোনো কিছু অর্জন করা হোক। কিন্তু গায়ের জোরে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করলে গায়ের জোর ছাড়া এর কোনো উপায় থাকে না। এটি হলো বাস্তবতা।'
| স্বাধীনতার চেতনা, মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বর্তমান সরকার ব্যবসা করছে বলে মন্তব্য করেছেন সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। |
দেশের টাকা বিদেশে পাঠিয়ে সরকার ইফতারে কৃচ্ছ্রসাধন করছে: আমির খসরু | বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে লুটপাট হয়ে গেছে আর সরকার এখন ইফতার মাহফিল না করে কৃচ্ছ্রসাধন করার কথা বলে বাংলাদেশের ইফতার মাহফিল সংস্কৃতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেছে।
২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগরীর একটি কনভেনশন হলে ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এ কথা বলেন।
'বাংলাদেশে ইফতার মাহফিল হবে কি হবে না এটি এখন প্রশ্নবিদ্ধ' মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'সরকারের পক্ষ বলা থেকে হয়েছে ইফতার মাহফিলের নামে কৃচ্ছ্রসাধন করতে। এখন এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছে দেশ। অথচ হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে, বিদেশে পাচার হয়েছে আর এখন বলা হচ্ছে ইফতারে কৃচ্ছ্রসাধন করতে।'
সরকারের কড়া সমালোচনা করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। স্বাধীনতার মূল অস্ত্র ছিল গণতন্ত্র। ভোটাধিকার ফেরানোর জন্য যুদ্ধ করেছিল বাঙালিরা। স্বাধীনতার এই ৫৩ বছরে আজ ভোটাধিকারসহ নাগরিকের সব অধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।'
আমীর খসরু বলেন, 'জানুয়ারির ৭ তারিখের নির্বাচনে জনগণ গণভোট দিয়েছে নির্বাচনে যাবে কি যাবে না। বিএনপির পক্ষ থেকে ডাক ছিল নির্বাচন বয়কটের ভোট বর্জনের। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে ৯৫ শতাংশ মানুষ ভোট না দিয়ে নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে।'
'আমাদের আন্দোলন চলছে, নতুনভাবে আন্দোলনের কিছু নেই। এই ৯৫ শতাংশ মানুষ আমাদের আন্দোলনের অংশ। গণতন্ত্রকামী সবাই এই আন্দোলনে আছে। হালুয়া রুটির জন্য, এমপি-মন্ত্রী হওয়ার জন্য আমরা আন্দোলন করছি না। ৭ তারিখের আগে বিএনপির আন্দোলন যত শক্তিশালী ছিল ৭ তারিখের পর তা আরও বেশি বেগবান ও শক্তিশালী হয়েছে,' যোগ করেন তিনি।
সভায় কারামুক্ত হওয়া বিএনপি নেতাকর্মী ও মুক্তিযোদ্ধাদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য গোলাম আকবর খন্দকার, এস এম ফজলুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন।
আরওরাতের আঁধারে গ্রেপ্তার করতে এলে ছবি তুলে রাখবেন: আমীর খসরু
আরওভোট চুরি করে আর পার পাওয়া যাবে না: আমির খসরু
| বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে লুটপাট হয়ে গেছে আর সরকার এখন ইফতার মাহফিল না করে কৃচ্ছ্রসাধন করার কথা বলে বাংলাদেশের ইফতার মাহফিল সংস্কৃতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেছে। |
সরকার মুখে বলে গণতন্ত্র, বাস্তবে করেছে এক দলীয় শাসন: মঈন খান | 'আজকে ৫৩ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের একটিই প্রশ্ন, গণতন্ত্র কোথায় গেল? সেই দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি কোথায় গেল?'
আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণের পরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।
মঈন খান বলেন, 'যে উদ্দেশ্য ও আদর্শ নিয়ে লাখো মানুষ বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, সেই আদর্শের জন্য নাম ছিল গণতন্ত্র এবং উদ্দেশ্য ছিল, বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করা।'
তিনি বলেন, 'একটি সরকার আজকে দেশে এসেছে, সে সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা মুখে বলে গণতন্ত্র, তারা বাস্তবে করেছে এক দলীয় শাসন। এবার করেছে বাকশাল টু। এটা আমার কথা নয়, এটা বিশ্ববাসীর কথা।'
বিদেশে লাখো কোটি টাকা পাচার হয়েছে দাবি করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, 'আজকে আপনারা দেখছেন, কীভাবে মেগা উন্নয়নের নামে মেগা দুর্নীতি হয়েছে।'
ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এক লাখ মামলা করা হয়েছে দাবি করে মঈন খান বলেন, '৫০ লাখের মতো নেতাকর্মীকে কারারুদ্ধ করা হয়েছে। মিথ্যা অভিযোগে তাদের আসামি বানানো হয়েছে। এখানে যদি মানুষের ভিন্ন মত প্রকাশের সুযোগ না থাকে, এ দেশে যদি মানুষের গণতন্ত্র চর্চার সুযোগ না থাকে, তাহলে আজকে কবরে শায়িত মুক্তিযোদ্ধারা কেন তারা দেশ স্বাধীন করেছে, কেন তারা জীবন দিয়ে যুদ্ধ করেছে?'
স্বাধীনতার ঘোষণার পাঠক কীভাবে ঘোষক হয়? ওবায়দুল কাদেরের এমন প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মঈন খান বলেন, 'চমৎকার প্রশ্ন। তবে আমি ব্যক্তি প্রশ্নের উত্তর দিতে চাই না। আপনারা জানেন, ব্যক্তি রাজনীতি আমরা করি না। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়। দলের চেয়ে দেশ বড়। আজকে অন্তত স্পষ্ট, যখন সেই ২৫ মার্চের কালো রাতে পাক হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের নিরীহ মানুষের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো। সেদিন আজকের যে আওয়ামী লীগ, যারা নিজেদের স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলে দাবি করে, তারা সেদিন কেন পলায়নপর ভূমিকা নিয়েছিল?'
তিনি বলেন, 'এই প্রশ্নের উত্তর আওয়ামী লীগ দিতে পারবে, আমরা দিতে পারব না, আমরা দিতেও চাই না। যে কারণে স্বাধীনতার ঝাণ্ডা উঁচু করে তুলে ধরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সেদিনের যেভাবে বিদ্রোহ ঘোষণা করে প্রকাশ্যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, সেই কথা ইথারে ভেসে শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা বিশ্বে প্রচারিত হয়েছিল। যার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সূচিত হয়েছিল। সারা বিশ্বের মানুষ জেনেছিল একটি স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হতে যাচ্ছে।'
'এর সঙ্গে আরেকটু কথা যোগ করে দিতে চাই, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে স্বয়ং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি সেক্টর কমান্ডার হিসেবে যুদ্ধ করেছিলেন। পালিয়ে লুকিয়ে থাকেননি কলকাতার আরাম আয়েশে। তিনি যুদ্ধ করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলেন। বাংলাদেশের মানুষ তাকে ভালোবেসে মুক্তিযুদ্ধের সর্বোচ্চ খেতাব বীর উত্তম উপাধি দিয়েছিলেন। আরও একটি তথ্য আপনাদের উদ্দেশ্যে দিতে চাই, আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রীয় ভোজসভা দিয়ে জিয়াউর রহমানকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বন্ধু রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় ভবনে শহীদ জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে সম্মান জানিয়েছিলেন,' যোগ করেন তিনি।
স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিতর্কের সুযোগ রয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, 'আমরা তো বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। আওয়ামী লীগের মতো আমরা কেউ কিছু বললে টুঁটি চেপে ধরি না। কাজেই ভিন্নমত পোষণে গণতন্ত্র থাকবে। ইতিহাসই সব কথা বলে দেবে।'
কেন বিভাজন তৈরি হলো? জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'প্রশ্নটি সরকারকে করতে হবে। সরকার কেন বিভাজন তৈরি করেছে? আজকে দুঃখ এবং লজ্জার সঙ্গে বলতে হয়, এ দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। যে কারণে তারা আজকে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য বাংলাদেশের মানুষকে দুটি ভাগে ভাগ করে দিয়ে, একে অপরের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দিয়ে ক্ষমতায় চিরস্থায়ী হতে চায়।'
জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনকালে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী প্রমুখ।
| 'আজকে ৫৩ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের একটিই প্রশ্ন, গণতন্ত্র কোথায় গেল? সেই দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি কোথায় গেল?' |
‘এই দিনে শপথ, বিএনপির নেতৃত্বাধীন অশুভ শক্তিকে পরাজিত করবো’ | পাঁচ দশক পরেও বিএনপি স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান স্বাধীনতা দিবসে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, 'এ বিরোধিতা আগেও হয়েছে। এই বিরোধীরা পাকিস্তান আমলে বিরোধিতা করেছে। যখন কোনো ইস্যু থাকে না, তখনই ভারত বিরোধিতা। এখনও সেটা হচ্ছে, নতুন কিছু না।'
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আজকে আমাদের দেশে স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিতর্ক করে। এতো বছর পরও সেই বিতর্ক চলছে। আমাদের বক্তব্য, ঘোষণার আরও পাঠক আছে। ঘোষণার পাঠক ঘোষক হতে পারে না। আবুল কাশেম সন্ধি, এমএ হান্নান অনেকেই ঘোষণা পাঠ করেন বঙ্গবন্ধুর নামে। সেখানে জেনারেল জিয়া, তৎকালীন মেজর জিয়াও বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন।'
তিনি বলেন, 'কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কে ঘোষক, এ বিতর্কের অবসান তখনই হবে, যখন আমরা সত্যের অনুসন্ধান করতে যাব। সেটা হচ্ছে এই স্বাধীনতার ঘোষণার ম্যান্ডেট এ অঞ্চলের জনগণের পক্ষ থেকে একমাত্র বঙ্গবন্ধুই পেয়েছিলেন '৭০ এর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। আর কারো কোনো বৈধ অধিকার নেই স্বাধীনতা ঘোষণা করার।'
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আজকে এই দিনে আমাদের শপথ হবে, বিএনপির নেতৃত্বে যে সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তি বিজয়কে সংহতকরণে বাধা বা অন্তরায় হয়ে আছে, এই অশুভ শক্তিকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নেতৃত্বে আমরা প্রতিহত করবো, পরাভূত করবো, পরাজিত করবো। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা অভিমুখে এগিয়ে যাব।'
| পাঁচ দশক পরেও বিএনপি স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। |
বিএনপির মিথ্যাচারের কারণে এখনো গণহত্যার স্বীকৃতি পাইনি: হানিফ | বিএনপির মিথ্যাচারের কারণে বাংলাদেশ এখনো গণহত্যার স্বীকৃতি পায়নি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ।
রাজধানী ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সোমবার ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
হানিফ বলেন, 'আজকে সেই ২৫ মার্চ, যে ২৫ মার্চ এই গণহত্যা শুরু হয়েছিল; সেই দিবসকে বাঙালি গণহত্যা দিবস হিসেবে মনে করে। এই গণহত্যায় ৩০ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল, অথচ সেই গণহত্যা এখনো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি লাভ করে নাই। আমরা যদি বিশ্বের দিকে তাকিয়ে দেখি, বিশ্বে যেসব গণহত্যা হয়েছিল—১৯১৫ সালে আরমারিয়া হত্যাকাণ্ড হয়েছিল, সে সময় রোমান সাম্রাজ্যের হাতে প্রায় ১৮ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছিল। এরপর আমরা দেখেছি, গণহত্যা হয়েছে নাজি বাহিনীর হাতে। নাৎসি বাহিনী প্রায় এক কোটি ১০ লাখ মানুষকে হত্যা করেছিল, যেটার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আছে।'
কম্বোডিয়া, রুয়ান্ডা, বসনিয়া হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, 'অথচ একাত্তর সালে আমাদের ৩০ লাখ বাঙালি প্রাণ হারিয়েছিল সেটার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নাই। এটা আমাদের জাতির জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।'
গণহত্যার স্বীকৃতি না পাওয়ার কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, 'এর কারণ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে যে সরকার ক্ষমতায় এসেছিল, সেই খুনি জিয়াউর রহমান; পাকিস্তানের প্রেতাত্মা, তারা ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আমাদের স্বাধীনতার, মুক্তিযুদ্ধে, গণহত্যার সব ইতিহাস তারা মুছে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।
'তাদের মিথ্যা প্রচারণায় আজকে আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গণহত্যার দাবি সোচ্চারভাবে তুলতে পারি নাই। এখনো যখন এই পাকিস্তানের প্রেতাত্মা, জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী বেগম খালেদা জিয়ার দল বিএনপি যখন বলে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষের প্রাণহানি হয় নাই, বড়জোর হয়তো এক-দুই লাখ মানুষ প্রাণ হারাতে পারে। এই ধরনের মিথ্যাচার করে আমাদের ইতিহাস বিকৃত করার কারণে কিন্তু আমরা আন্তর্জাতিকভাবে এই গণহত্যার স্বীকৃতি আমরা আনতে পারি নাই। আমরা স্বীকৃতি পাই নাই,' বলেন তিনি।
হানিফ আরও বলেন, 'আজকে ২৫ মার্চ এই গণহত্যা দিবস থেকে আমরা পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই, যারা ১৯৭১ সালের এই স্বাধীনতার ইতিহাস মানে না, যারা গণহত্যা দিবস মানে না, তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে বয়কট করে আমরা আমাদের গণহত্যা দিবস আন্তর্জাতিকভাবে আদায় করব এটাই হোক আজকে আমাদের অঙ্গীকার।'
| বিএনপির মিথ্যাচারের কারণে বাংলাদেশ এখনো গণহত্যার স্বীকৃতি পায়নি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ। |
ব্যাংক একীভূত করে আরেকটা দুর্নীতির ব্যবস্থা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল | ব্যাংক লোপাট করে দিয়ে এখন ব্যাংক একীভূত করে আরেকটা দুর্নীতির ব্যবস্থা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ সোমবার দুপুরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'ফকির আলমগীরের (প্রয়াত গণসঙ্গীত শিল্পী) একটা গান আছে—দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা, কারও দানে নয়। আমরা রক্তের দাম দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি। কারও দয়ায় বাংলাদেশ স্বাধীন হয় নাই।'
সমাবেশে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, 'আজ সেই বোধ নিয়ে রুখে দাঁড়ান। আন্তর্জাতিক বিশ্ব নিশ্চয়ই সেই বিষয়গুলো তারা দেখবে, দেখেছে অতীতে। আর কোনো দেশ যদি আমাদের মনে করে যে, আমাদের ওপর প্রভুত্ব করবে, বাংলাদেশের মানুষ কোনোদিন সেই প্রভুত্ব স্বীকার করে নাই—মুঘল আমলেও করেনি, ব্রিটিশ আমলেও করেনি, পাকিস্তান আমলেও করেনি, এখনো করবে না।'
তরুণ সমাজকে জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আমি বৃদ্ধ মানুষ হয়ে গেছি। হাফিজ (হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম) ভাই আমার চেয়েও বড়। আমরা এখনো লড়ছি, কথা বলছি, লড়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমরা এখনো বিশ্বাস করি, এই দেশকে পরাধীন করে রাখার ক্ষমতা কারও নেই। আমরা বিশ্বাস করি এই ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী একটা রেজিম একটা শাসকগোষ্ঠী যারা আজ জোর করে, কলা-কৌশল করে, বিভিন্ন নাটক করে ক্ষমতা দখল করে আছে তাদের একদিন চলে যেতেই হবে।'
'সেজন্য বলি, মানুষকে সঙ্গে নিয়ে নামতে হবে। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে না নামলে আপনারা জয়ী হতে পারবেন না। সেই মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কিছুক্ষণ আগে এখান দিয়ে রিকশা শ্রমিক ভাইয়েরা গেলেন। এরকম শ্রমিক ভাইদেরকে নামাতে হবে। এরকম সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ভাইদের আনতে হবে। সব জায়গা থেকে মানুষ উঠে আসবে যেদিন, সেদিন হবে সত্যিকার অর্থেই সফল গণঅভ্যুত্থান, সফল বিস্ফোরণ—বিজয়।'
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিএনপির স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কমিটির উদ্যোগে এ মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ হয়। সমাবেশের ব্যানারে 'ভারতীয় পণ্য বর্জন করুন' লেখা ছিল।
সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে শনিবার দেশে ফিরে আসার পর এটি মির্জা ফখরুলের প্রথম রাজনৈতিক কর্মসূচি।
'ব্যাংক একীভূত আরেকটা দুর্নীতির কৌশল'
সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, 'সরকার বলে, দারিদ্র্যের সংখ্যা নাকি কমে এসেছে ১৯ শতাংশ। নিরাপত্তা বেষ্টনীর কর্মসূচির আওতায় সরকার যে ভাতা দেয়, দুঃস্থ ভাতা, বিধবা ভাতা, দরিদ্র ভাতা সেটা ৩৮ শতাংশে নিয়ে যায়। পত্রিকা বলছে, ওখানেও (দরিদ্র ভাতা) এরা ভাগ বসায়, তাদের জন্য বরাদ্দের টাকা নিয়ে যায়। এভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা তারা বিদেশে পাচার করেছে। টাকার কোনো হিসাব নাই।'
'ব্যাংক লোপাট করে দিয়ে এখন ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। এটা আবার আরেকটা দুর্নীতির ব্যবস্থা তৈরি করছে,' যোগ করেন তিনি।
আরওধুঁকতে থাকা ব্যাংকিং খাতে কতটা স্বস্তি ফেরাবে একীভূতকরণ?
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির প্রসঙ্গ তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি করেছে। আপনারা কী করছেন? উত্তর দিতে পারবেন না। একটা প্রতিবাদ পর্যন্ত করেন নাই। এই যে মেয়েরা বসে আছে আপনারা প্রতিবাদ করেন নাই। আমি কিছুক্ষণ আগে ফজলুর রহমান সাহেবের সঙ্গে কথা বলছিলাম। কোথায় গেলো সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কোথায় গেলো ছাত্ররা যারা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছে, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন করেছে, ৬৯ এর আন্দোলন করেছে, ৯০ এর আন্দোলন করেছে কোথায় গেছে তারা।'
'আজ ছাত্রদলের নেতারা এখানে যারা আছেন এভাবে শুধু শ্লোগান দিলে হবে না, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। কিছুক্ষণ আগেই আমাদের পুরোনো মুক্তিযোদ্ধা ভালো সংগঠক বলছিলেন, ইনফ্যান্ট্রি যদি শক্তিশালী না হয় তাহলে যুদ্ধ কে করবে? ইনফ্যান্ট্রিকে শক্তিশালী করতে হবে, যারা পুলিশের হুইসেল শুনলে দৌড়াবে না, যারা সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দ শুনলে পালাবে না, যারা রাস্তায় অনড় হয়ে প্রাণ দেবে, দাঁড়িয়ে থাকবে এই মানুষগুলো তৈরি করতে হবে, সেই সাহস বুকে তৈরি করে দাঁড়াতে হবে।'
একাত্তরে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, 'যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। আমি জানি আমার বহু ছেলেরা সেভাবে কষ্ট করছে, তারা কেউ বাড়িতে থাকতে পারে না, তাদের চাকরি-বাকরি নাই, টাকা-পয়সা নাই, তাদের কোনো ভবিষ্যৎ নাই। তারা লড়াই করছে দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য।'
'এই গণতন্ত্র ফেরানোর বিষয়টি ছড়িয়ে দিতে হবে সারাদেশে তরুণ সমাজের মধ্যে। সেই সাহস ও বোধ তৈরি করতে হবে যে আমি যা করছি তা আমার দেশের জন্য করছি, আমি যা করছি তা আমার গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য করছি, আমি যা করছি তা আমার দেশমাতৃকাকে রক্ষা করার জন্য করছি,' বলেন তিনি।
'ইমরান খানের দিকে তাকান'
মির্জা ফখরুল বলেন, 'পাকিস্তানের দিকে তাকিয়ে দেখেন। ইমরান খান দেখিয়ে দিয়েছেন যে কীভাবে তরুণদের মাঠে নিয়ে আসতে হয়। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, কীভাবে নারীদের মাঠে আনতে হয়। আমাদের চেয়ে কম অত্যাচার তাদের ওপর হয়নি। তারা সেনানিবাস আক্রমণ করেছিল, তারা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তারা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। পাকিস্তানে এই অবস্থান নিয়ে কেউ কোনোদিন রাজনীতিতে টিকতে পারে নাই।'
আরওএক্সিম-পদ্মা ব্যাংক একীভূত হতে অন্তত ১৮ মাস লাগতে পারে
তিনি বলেন, 'ইমরান খান জেলে গেছে, ৩৪ বছর সাজা হয়েছে, তার ২ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, জোর করে দল বদল করা হয়েছে। তারপরেও জেলে বসে যখন তার দলের মার্কা নিয়ে গেছে, তখন তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নির্বাচনে যাও। এই সেই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঝাঁপিয়ে পড়েছে কারা—এই তরুণেরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আপনারা সবাই ব্যবহার করেন। সেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।'
একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, 'আজ ২৫ মার্চের কালো রাত। আওয়ামী লীগ অস্বীকার করতে পারে, সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ চেষ্টা করেছে পাকিস্তানের সঙ্গে একটা দফা-রফা করার জন্য। যখন ব্যর্থ হয়েছে, যখন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টসহ জুলফিকার আলী ভুট্টো ঢাকা ছেড়ে চলে গেছে তখন আমাদের তৎকালীন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ তারা কেউ দেশে থাকেননি, পালিয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। আর মূল নেতাকে পাকিস্তানিদের কাছে আত্মসমর্পণ করে তিনি পাকিস্তান চলে গেছেন।'
'তারপর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্য দিয়ে সব মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে যুদ্ধ করেছিল বলেই ১৯৭১ সালে আমরা দেশ স্বাধীন করতে পেরেছি,' বলেন তিনি।
অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজের সভাপতিত্বে ও মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, ফজলুর রহমান, ফরহাদ হালিম ডোনার, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জয়নাল আবেদীন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরওদুর্বল ব্যাংকগুলোকে ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বেচ্ছায় একীভূত হওয়ার সময় দিল বাংলাদেশ ব্যাংক
সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, 'সরকার বলে, দারিদ্র্যের সংখ্যা নাকি কমে এসেছে ১৯ শতাংশ। নিরাপত্তা বেষ্টনীর কর্মসূচির আওতায় সরকার যে ভাতা দেয়, দুঃস্থ ভাতা, বিধবা ভাতা, দরিদ্র ভাতা সেটা ৩৮ শতাংশে নিয়ে যায়। পত্রিকা বলছে, ওখানেও (দরিদ্র ভাতা) এরা ভাগ বসায়, তাদের জন্য বরাদ্দের টাকা নিয়ে যায়। এভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা তারা বিদেশে পাচার করেছে। টাকার কোনো হিসাব নাই।'
'ব্যাংক লোপাট করে দিয়ে এখন ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। এটা আবার আরেকটা দুর্নীতির ব্যবস্থা তৈরি করছে,' যোগ করেন তিনি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির প্রসঙ্গ তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি করেছে। আপনারা কী করছেন? উত্তর দিতে পারবেন না। একটা প্রতিবাদ পর্যন্ত করেন নাই। এই যে মেয়েরা বসে আছে আপনারা প্রতিবাদ করেন নাই। আমি কিছুক্ষণ আগে ফজলুর রহমান সাহেবের সঙ্গে কথা বলছিলাম। কোথায় গেলো সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কোথায় গেলো ছাত্ররা যারা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছে, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন করেছে, ৬৯ এর আন্দোলন করেছে, ৯০ এর আন্দোলন করেছে কোথায় গেছে তারা।'
'আজ ছাত্রদলের নেতারা এখানে যারা আছেন এভাবে শুধু শ্লোগান দিলে হবে না, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। কিছুক্ষণ আগেই আমাদের পুরোনো মুক্তিযোদ্ধা ভালো সংগঠক বলছিলেন, ইনফ্যান্ট্রি যদি শক্তিশালী না হয় তাহলে যুদ্ধ কে করবে? ইনফ্যান্ট্রিকে শক্তিশালী করতে হবে, যারা পুলিশের হুইসেল শুনলে দৌড়াবে না, যারা সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দ শুনলে পালাবে না, যারা রাস্তায় অনড় হয়ে প্রাণ দেবে, দাঁড়িয়ে থাকবে এই মানুষগুলো তৈরি করতে হবে, সেই সাহস বুকে তৈরি করে দাঁড়াতে হবে।'
একাত্তরে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, 'যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। আমি জানি আমার বহু ছেলেরা সেভাবে কষ্ট করছে, তারা কেউ বাড়িতে থাকতে পারে না, তাদের চাকরি-বাকরি নাই, টাকা-পয়সা নাই, তাদের কোনো ভবিষ্যৎ নাই। তারা লড়াই করছে দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য।'
'এই গণতন্ত্র ফেরানোর বিষয়টি ছড়িয়ে দিতে হবে সারাদেশে তরুণ সমাজের মধ্যে। সেই সাহস ও বোধ তৈরি করতে হবে যে আমি যা করছি তা আমার দেশের জন্য করছি, আমি যা করছি তা আমার গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য করছি, আমি যা করছি তা আমার দেশমাতৃকাকে রক্ষা করার জন্য করছি,' বলেন তিনি।
'ইমরান খানের দিকে তাকান'
মির্জা ফখরুল বলেন, 'পাকিস্তানের দিকে তাকিয়ে দেখেন। ইমরান খান দেখিয়ে দিয়েছেন যে কীভাবে তরুণদের মাঠে নিয়ে আসতে হয়। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, কীভাবে নারীদের মাঠে আনতে হয়। আমাদের চেয়ে কম অত্যাচার তাদের ওপর হয়নি। তারা সেনানিবাস আক্রমণ করেছিল, তারা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তারা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। পাকিস্তানে এই অবস্থান নিয়ে কেউ কোনোদিন রাজনীতিতে টিকতে পারে নাই।'
আরওএক্সিম-পদ্মা ব্যাংক একীভূত হতে অন্তত ১৮ মাস লাগতে পারে
তিনি বলেন, 'ইমরান খান জেলে গেছে, ৩৪ বছর সাজা হয়েছে, তার ২ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, জোর করে দল বদল করা হয়েছে। তারপরেও জেলে বসে যখন তার দলের মার্কা নিয়ে গেছে, তখন তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নির্বাচনে যাও। এই সেই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঝাঁপিয়ে পড়েছে কারা—এই তরুণেরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আপনারা সবাই ব্যবহার করেন। সেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।'
একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, 'আজ ২৫ মার্চের কালো রাত। আওয়ামী লীগ অস্বীকার করতে পারে, সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ চেষ্টা করেছে পাকিস্তানের সঙ্গে একটা দফা-রফা করার জন্য। যখন ব্যর্থ হয়েছে, যখন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টসহ জুলফিকার আলী ভুট্টো ঢাকা ছেড়ে চলে গেছে তখন আমাদের তৎকালীন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ তারা কেউ দেশে থাকেননি, পালিয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। আর মূল নেতাকে পাকিস্তানিদের কাছে আত্মসমর্পণ করে তিনি পাকিস্তান চলে গেছেন।'
'তারপর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্য দিয়ে সব মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে যুদ্ধ করেছিল বলেই ১৯৭১ সালে আমরা দেশ স্বাধীন করতে পেরেছি,' বলেন তিনি।
অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজের সভাপতিত্বে ও মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, ফজলুর রহমান, ফরহাদ হালিম ডোনার, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জয়নাল আবেদীন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরওদুর্বল ব্যাংকগুলোকে ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বেচ্ছায় একীভূত হওয়ার সময় দিল বাংলাদেশ ব্যাংক
মির্জা ফখরুল বলেন, 'পাকিস্তানের দিকে তাকিয়ে দেখেন। ইমরান খান দেখিয়ে দিয়েছেন যে কীভাবে তরুণদের মাঠে নিয়ে আসতে হয়। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, কীভাবে নারীদের মাঠে আনতে হয়। আমাদের চেয়ে কম অত্যাচার তাদের ওপর হয়নি। তারা সেনানিবাস আক্রমণ করেছিল, তারা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তারা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। পাকিস্তানে এই অবস্থান নিয়ে কেউ কোনোদিন রাজনীতিতে টিকতে পারে নাই।'
তিনি বলেন, 'ইমরান খান জেলে গেছে, ৩৪ বছর সাজা হয়েছে, তার ২ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, জোর করে দল বদল করা হয়েছে। তারপরেও জেলে বসে যখন তার দলের মার্কা নিয়ে গেছে, তখন তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নির্বাচনে যাও। এই সেই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঝাঁপিয়ে পড়েছে কারা—এই তরুণেরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আপনারা সবাই ব্যবহার করেন। সেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।'
একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, 'আজ ২৫ মার্চের কালো রাত। আওয়ামী লীগ অস্বীকার করতে পারে, সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ চেষ্টা করেছে পাকিস্তানের সঙ্গে একটা দফা-রফা করার জন্য। যখন ব্যর্থ হয়েছে, যখন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টসহ জুলফিকার আলী ভুট্টো ঢাকা ছেড়ে চলে গেছে তখন আমাদের তৎকালীন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ তারা কেউ দেশে থাকেননি, পালিয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। আর মূল নেতাকে পাকিস্তানিদের কাছে আত্মসমর্পণ করে তিনি পাকিস্তান চলে গেছেন।'
'তারপর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্য দিয়ে সব মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে যুদ্ধ করেছিল বলেই ১৯৭১ সালে আমরা দেশ স্বাধীন করতে পেরেছি,' বলেন তিনি।
অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজের সভাপতিত্বে ও মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, ফজলুর রহমান, ফরহাদ হালিম ডোনার, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জয়নাল আবেদীন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
| ব্যাংক লোপাট করে দিয়ে এখন ব্যাংক একীভূত করে আরেকটা দুর্নীতির ব্যবস্থা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। |
বাংলাদেশ গভীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে: ফখরুল | ঢাকায় বিদেশি কূটনীতিকদের নিয়ে ইফতার করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা।
রোববার রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে ইফতার অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফাভ, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোসটার, অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নারদিয়া সিম্পসন উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে চীন, ভারত, পাকিস্তান, নরওয়ে, সুইডেন, নেপালসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরাও ছিলেন। জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকরাও ছিলেন এই অনুষ্ঠানে।
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইফতারে কূটনীতিকদের শুভেচ্ছা জানান।
ইসরায়েলি বাহিনী কর্তৃক ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি ফিলিস্তিন সমস্যার স্থায়ী সমাধানে 'টু স্টেট পলিসি'র দাবিও জানান।
একইসঙ্গে বর্তমান 'ফ্যাসিস্ট সরকারের' ৭ জানুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠান, বিরোধী দলের ওপর নির্মম দমন-পীড়নের চিত্র তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ একটা গভীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে। দেশে একটা ফ্যাসিস্ট রেজিমের শাসন চলছে… তারা ৭ জানুয়ারি একটি নির্বাচন করেছে যেটা কোনো নির্বাচন হয়নি।'
নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ হাজারো নেতাকর্মী গ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলা দায়েরের কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, 'দেশের জনগণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় এই ফ্যাসিস্ট রেজিম সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের জন্য সংগ্রাম করছে।'
বর্তমান সংকট সমাধানে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন বিএনপি মহাসচিব।
ইফতারের আগে বিএনপি মহাসচিব কূটনীতিকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন, মীর নাসির, বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের জয়নুল আবদিন ফারুক, ফজলে এলাহী আকবর, আবদুল কাইয়ুম, ফরহাদ হালিম ডোনার, সুজা উদ্দিন, ইসমাইল জবিউল্লাহ, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, কেন্দ্রীয় নেতা মজিবুর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শ্যামা ওবায়েদ, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জহির উদ্দিন স্বপন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কায়সার কামাল, আসাদুজ্জামান আসাদ, ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, মীর হেলাল, মওদুদ হোসেন আলমগীর, শাহ নেসারুল হক, ইশরাক হোসেন, আতিকুর রহমান রুমন, শায়রুল কবির খান, শামসুদ্দিন দিদার অনুষ্ঠানে ছিলেন।
আরও ছিলেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, অধ্যাপক শহীদুজ্জামান, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাহবুব উদ্দিন খোকন, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ইনকিলাবের সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দিন, সাবেক ব্যাংকার বখতিয়ার নাসের বখতিয়ার, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব তাজুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মওলা রনি।
ইফতার ও মাগরিবের নামাজ শেষে কূটনীতিকরা নৈশভোজেও অংশ নেন।
| ঢাকায় বিদেশি কূটনীতিকদের নিয়ে ইফতার করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা। |
ভারতীয় পণ্য বর্জনের নামে বিএনপি দেশের অর্জনকে ধ্বংস করতে চায়: কাদের | আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভারতীয় পণ্য বর্জনের নামে বিএনপি এখন দেশের অর্জনকে ধ্বংস করতে চায়।
আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যানবাহন চলাচলের জন্য সাতটি ফ্লাইওভার উন্মুক্তকরণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি, এয়ারপোর্ট-গাজীপুর) প্রকল্পের সওজ অংশের আওতায় এই ফ্লাইওভারগুলো নির্মিত হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'পণ্য বর্জন এটা কি সম্ভব। বাংলাদেশ ও ভারতের যে অবস্থা, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের যে লেনদেন, যে আদান-প্রদান হয়ে থাকে, তার মধ্যে এমন বর্জনের প্রস্তাব বাস্তব সম্মত কি না! আসলে তারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের নামে দেশের অর্জনকে ধ্বংস করতে চায়।'
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'বিএনপি নেতারা ব্যর্থতার জন্য তারা নিজেরাই ক্লান্ত, তাদের কর্মীরা হতাশ। নেতাদের কারও সঙ্গে কারও কথার মিল আমরা দেখি না। মঈন খান ভারতের সহযোগিতা চান, রিজভী আবার ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দেন।'
দেশের তরুণ প্রজন্মকে সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রমের বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিএনপি আন্দোলন করার লোক পায় না, সামরিক প্রশিক্ষণ কাকে দেবে। এটি প্রতারণাপূর্ণ একটি কৌশল। আসলে দলটির নেতারা একেকজন একেক কথা বলেন। এখন আমরা শুনতে চাই দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কী বলেন? তিনিই দলের মহাসচিব।'
মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'মধ্যবর্তী নির্বাচনের চিন্তা সরকার কেন করবে? এর কোনো যুক্তিও নেই, বাস্তবতাও নেই। নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে হবে। আমাদের সংবিধানে মধ্যবর্তী নির্বাচনের কোনো কথা বলা নেই।'
ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'সবাইকে যার যার কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। সবাই যার যার কাজ নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবেন প্রত্যাশা করছি। এবার ঈদযাত্রা পুরোপুরি স্বস্তিদায়ক হবে বলে আশা করছি।'
ফ্লাইওভার যান চলাচলে উন্মুক্তকরণ অনুষ্ঠানে ঢাকা প্রান্তে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, সেতু বিভাগের সচিব মনজুর হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
| আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভারতীয় পণ্য বর্জনের নামে বিএনপি এখন দেশের অর্জনকে ধ্বংস করতে চায়। |
ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দ্রব্যমূল্য বাড়ানোই বিএনপির উদ্দেশ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী | পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশে ভোগ্যপণ্য থেকে শুরু করে অনেক পণ্যই ভারত থেকে আসে। ভারতের সাথে আমাদের হাজার হাজার কিলোমিটার সীমান্ত এবং কিছু সীমান্ত বাণিজ্যও হয় বৈধভাবে। আসলে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজার অস্থিতিশীল করে তোলা ও দ্রব্যমূল্য বাড়ানোই বিএনপির মূল উদ্দেশ্য। এতে দেশে যাতে জনগণের ভোগান্তি হয় এবং পণ্যের মূল্য বাড়ে।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা ভারত থেকে আসা পেঁয়াজ খাবেন, আপনাদের নেত্রী ভারত থেকে আসা শাড়ি পরিধান করবেন, আপনাদের নেত্রী যেগুলো মাঠে গলা ফাটায়, তারাও আবার ভারতীয় শাড়ি পড়বেন, ভারত থেকে আসা গরুর মাংস দিয়ে আপনারা ইফতার করবেন সেহেরি খাবেন, কদিন আগে ওদের নেতা ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। ভারতে চিকিৎসা নিতে যাবেন। আবার আপনারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিবেন। এগুলো হিপোক্রেসি ছাড়া অন্য কোনকিছু নয়। বিএনপির আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে বাজার অস্থিতিশীল করে পণ্যের মূল্য বাড়ানো।
আজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে চট্টগ্রাম জেলায় সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে বিএনপিসহ কয়েকটি দল ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক সম্পর্কে সাংবাদিকরা সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ভারতীয় পণ্য বর্জনের যারা ডাক দিয়েছে, তাদের সাথে শামিল হয়ে রিজভী সাহেব নিজের পরনের শালটিও জ্বালিয়ে দিয়েছে। আসলে শালটি ভারত থেকে কিনেছিল, নাকি বঙ্গবাজার থেকে কিনেছে আমি জানি না।
সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছে জিম্মি জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারে সরকারের পক্ষ থেকে কি ধরণের ভূমিকা রাখা হচ্ছে সাংবাদিকদের প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গতবার যখন এমভি জাহান মনি হাইজ্যাক হয়েছিল তাদেরকে মুক্ত করতে ১০০ দিন সময় লেগেছিল। এখন যতদ্রুত সম্ভব তাদেরকে মুক্ত করার চেষ্টাই আমরা করছি। এখানে অবস্থানকারী নাবিক এবং জাহাজের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেভাবেই আমরা উদ্ধার করার চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, 'জাহাজের মধ্যে কয়লা আছে, কয়লা একটি দাহ্য পদার্থ। সুতরাং এমন কিছু করা যাবে না যাতে করে দাহ্য পদার্থ হুমকির সম্মুখীন হয়, জাহাজের ক্ষতি হয়। সেভাবেই আমরা এগুচ্ছি এবং যারা জাহাজটি হাইজ্যাক করেছে, তারা ইতিমধ্যে মালিক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছে, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও এ ব্যাপারে আমাদেরকে সহযোগিতা করছে এবং আপনারা নাবিকদের পরিবারের সাথে কথা বললেও জানতে পারবেন তারাও অনেকটা আশ্বস্ত। আশা করছি, আমরা সহসা নাবিকদেরকে উদ্ধার করতে পারব।'
চট্টগ্রামের উন্নয়ন সমন্বয় সভায় জলাবদ্ধতা প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এবং জলাবদ্ধতা প্রকল্পের সমন্বয়ের ওপর আমরা গুরুত্ব দিয়েছি জানিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান বলেন, প্রকল্প শেষ হতে আরও আড়াই বছর বাকি আছে। এই আড়াই বছর সময়ের মধ্যে জনগণের যাতে কোন ভোগান্তি না হয় সেটির ওপর গুরুত্ব দিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। একইসাথে এই প্রকল্প শেষ হওয়ার পর যাতে নিয়মিতভাবে মেনটেইনেন্স করা হয় সেটিকেও গুরুত্ব দিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।
তিনি বলেন, আপনারা জেনে খুশি হবেন, আজকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বে-টার্মিনালের জন্য ইতিমধ্যে পাঁচশ' একর জায়গা প্রধানমন্ত্রী বিনামূল্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছেন। আরও তিনশ' একরের বেশি জায়গা তারা পাবে, সেটির জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ আবেদন করেছে। ইতিমধ্যেই ডিপি ওয়ার্ল্ড এবং সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটির সাথে চট্টগ্রাম বন্দর এমওইউ স্বাক্ষর করেছে।
তিনি আরও বলেন, এখানে তিনটি ভাগে কাজ হবে। একটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ করবে, আরেকটি সিঙ্গাপুর বন্দর কর্তৃপক্ষ করবে, আরেকটি ডিপি ওয়ার্ল্ড করবে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানও সেখানে যুক্ত হচ্ছে। এটা একটি বড় অগ্রগতি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, বে-টার্মিনাল হলে সেটি চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে আরও বড় একটি নতুন বন্দর হবে। যেটি সমগ্র বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন সম্পদ হবে এবং একইসাথে এই বে-টার্মিনাল দিয়ে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহের পণ্য সরবরাহ আমরা করতে পারব। এছাড়া চট্টগ্রামে পাহাড়কাটা বন্ধ ও যানজট নিরসনসহ সার্বিক অনেক বিষয় নিয়ে সমন্বয় সভায় আমরা আলোচনা করেছি। আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি, প্রতি তিনমাস পরপর আমরা এরকম সমন্বয় সভা করব।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামানের সঞ্চালনায় চট্টগ্রামের উন্নয়ন সংক্রান্ত সমন্বয় সভায় অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়েশা খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরী, সংসদ সদস্য মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, এম এ ছালাম, এম এ মোতালেব সিআইপি, বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, ডিআইজি নুরে আলম মিনা, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
| পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশে ভোগ্যপণ্য থেকে শুরু করে অনেক পণ্যই ভারত থেকে আসে। ভারতের সাথে আমাদের হাজার হাজার কিলোমিটার সীমান্ত এবং কিছু সীমান্ত বাণিজ্যও হয় বৈধভাবে। আসলে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজার অস্থিতিশীল করে তোলা ও দ্রব্যমূল্য বাড়ানোই বিএনপির মূল উদ্দেশ্য। এতে দেশে যাতে জনগণের ভোগান্তি হয় এবং পণ্যের মূল্য বাড়ে। |
রাজনৈতিক কোনো ইস্যু না পেয়ে বিএনপি ভারত বিরোধিতা শুরু করেছে: কাদের | রাজনৈতিক কোনো ইস্যু না পেয়ে বিএনপি ভারত বিরোধিতা শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, 'পাকিস্তান আমল থেকে যে অপপ্রচার শুনেছি, কোনো রাজনৈতিক ইস্যু যখন থাকে না, তখন একটাই ইস্যু আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নিয়ে আসে। আগে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে আনতো আর এখন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনে। সেটা হচ্ছে ভারত বিরোধিতার ইস্যু।'
সেতুমন্ত্রী আজ শনিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ইফতার ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দুই হাজার মানুষকে ইফতার ও ঈদ সামগ্রী প্রদান করা হয়।
তিনি বলেন, 'বিএনপি ইফতার পার্টি করে, আর আওয়ামী লীগ ইফতার সামগ্রী বিতরণ করে। তারা ইফতার খাওয়ার পার্টি করে আর আমরা ইফতার দেওয়ার পার্টি করি। এটাই বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে পার্থক্য। আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের মধ্যে ইফতার বিতরণে যে উদ্যোগ নিয়েছে, সেটা সারা ঢাকা শহরে ছড়িয়ে দিতে হবে।'
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিএনপি ক্ষমতার দল, নিজেদের পকেট উন্নয়নের দল। জনগণের ভাগ্য উন্নয়নের দল হচ্ছে আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা। তারা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় নেই তো, লুটেপুটে হাওয়া ভবন করার সুযোগ নেই। হাওয়া ভবন ছাড়া বিএনপি টিকবে না। কারণ এই দল ক্ষমতা কেন্দ্রিক দল, মানুষের দল না। জনগণের দল আওয়ামী লীগ, ক্ষমতার দল বিএনপি। এটাই দুই দলের পার্থক্য।'
তিনি বলেন, 'বিএনপির নেতায় নেতায় কথার মিল নেই। কোনো সুযোগ যখন থাকে না, তখন বিএনপি ভারত বিরোধিতা শুরু করে।'
বাংলাদেশের ভোট বানচালের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার সময় ভারত পাশে ছিল জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, 'বিএনপির সব নেতাই একে একে জেল থেকে বেরিয়ে গেছে। এখন তারা বিদেশ গিয়ে দেশের বিরুদ্ধে সবক দিচ্ছে।'
বাংলাদেশের মানুষ ৪১ ভাগেরও বেশি ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে জয়ী করেছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'যেটা অনেক উন্নত দেশও পারে না। তারপরও বলবে ইন্ডিয়া নিয়ে এসেছে। ইন্ডিয়া কোথায়? আমাদের দেশের মানুষ ভোট দিয়েছে। তারা আমাদের ভোট দেয়নি, তারা আমাদের ভোট বানচাল প্রতিহত করার জন্য আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।'
দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়া নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন আছে মন্তব্য করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, 'যদিও এখন কিছু কিছু পণ্যের দাম কমে যাচ্ছে। পেঁয়াজ ত্রিশ টাকার মধ্যে নেমে এসেছে। দাম আরও কমবে এবং সাধারণ মানুষের ক্রয় সীমার মধ্যে আসবে।'
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের সভাপতিণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেন মিয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ।
| রাজনৈতিক কোনো ইস্যু না পেয়ে বিএনপি ভারত বিরোধিতা শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। |
মিথ্যা মামলায় আসামি হওয়া নিয়মে পরিণত হয়েছে: মির্জা ফখরুল | অপরাধ না করেও মিথ্যা মামলায় আসামি হওয়া এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব।
গত ২০ মার্চ এক মামলায় বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও শেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মাহমুদুল হক রুবেলসহ বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের আরও ২২ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় মির্জা ফখরুল উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিবৃতিতে।
তিনি বলেন, মিথ্যা, হয়রানিমূলক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় তারা শেরপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠায়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, '৭ জানুয়ারি আওয়ামী ডামি সরকার তাদের অনৈতিক ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে সারাদেশে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর যে জুলুম চালাচ্ছে সেটির আরও একটি কু-নজির স্থাপিত হলো তাদের কারাগারে পাঠানোর মধ্য দিয়ে।'
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, 'রোজার প্রাক্কালে বিদ্যুৎ, গ্যাস, জ্বালানি, সুপেয় পানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন চড়া মূল্যে যখন মানুষ চোখে অন্ধকার দেখছে, তখন অবৈধ আওয়ামী সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে নিত্য নতুন মিথ্যা মামলায় আটকসহ জামিন নামঞ্জুরের মাধ্যমে কারান্তরীণের হিড়িক অব্যাহত রেখেছে।'
'নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্বিষহ সংকট। ক্ষমতাসীনদের দৌরাত্ম্য এবং দাপটে মানুষ চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে,' বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'সব অপকর্মকে আড়াল করতে ডামি সরকার নতুন করে সরকারি জুলুমের মাত্রা বাড়িয়েছে। অপরাধ না করেও মিথ্যা মামলায় আসামি হওয়া এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'আইনের শাসনহীন এই দেশে নিরপরাধ মানুষরাই সরকারি নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনের পর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী কর্তৃত্ববাদী সরকার আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তবে এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে সংগ্রামী জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন-সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।'
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মাহমুদুল হক রুবেলসহ বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের আরও ২২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা প্রত্যাহারসহ অবিলম্বে তাদের মুক্তির দাবি জানান।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চিকিৎসার জন্য বর্তমানে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন।
গত ৩ মার্চ তিনি সিঙ্গাপুরে যান। আগামীকাল শনিবার বিকেলে তার ঢাকায় ফেরার কথা।
| অপরাধ না করেও মিথ্যা মামলায় আসামি হওয়া এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। |
প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতে প্রজ্ঞাপন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী | প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের পর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলোর মান উন্নয়নের জন্য সরকারি আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমরা যেটা চাই প্রতিবার যে, আইনগত কোনো জটিলতা আছে কি না, উনি (আইনমন্ত্রী) আমাদের ফাইলটি ফেরত পাঠিয়েছেন; কোনো আইনগত জটিলতা নেই। এখন আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফাইলটি পাঠাবো। তিনি সম্মতি দিলে আমরা একটি জিও (প্রজ্ঞাপন) করে পরবর্তী অ্যাকশনে যাব। সব কিছুরই প্রসেস চলছে।'
তিনি বলেন, 'খালেদা জিয়ার মামলা ছিল, মামলায় তিনি সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন এবং তার নামে আরও কিছু মামলা আছে। কাজেই আদালতের যে সিদ্ধান্ত, সেই সিদ্ধান্তের বাইরে; আদালত একটি স্বাধীন সংস্থা, আপনারা জানেন। আদালত যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেই সিদ্ধান্তের বাইরে আমরা কোনো কিছু করিনি।
'কোর্টের সিদ্ধান্তের পরে আমাদের প্রধানমন্ত্রী তার ক্ষমতাবলে তাকে বাসায় থেকে সুচিকিৎসা নেওয়ার জন্য ব্যবস্থা করে দিয়েছেন. সাজাটা স্থগিত রেখে। এটাই হলো বর্তমান অবস্থা। আমাদের দেশে যারা আদালত থেকে অপরাধের দণ্ডপ্রাপ্ত হন, তারা যে নিয়মে চলে সে অনুযায়ী চলছে, এর ব্যত্যয় ঘটেনি,' যোগ করেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমরা চিন্তা করছি পূর্ত মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস সবগুলো এজেন্সি একটি ছাতার নিচে, একটি কমান্ডে নিয়ে আসার। তাদের মাধ্যমে আমরা সব কিছু পরিচালনা করব। এটি আলোচনা পর্যায়ে আছে, এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।'
তিনি বলেন, 'একেক দিন একেক এজেন্সি অভিযানে গেলে এই যে (রেস্তরাঁ) ব্যবসাটা গড়ে উঠেছে, সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা চাই, ব্যবসাটা চালু থাকবে এবং এখানে যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। আগুনে পোড়া মানুষের স্রোতটা যেন বন্ধ হয়।'
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'নকশা বহির্ভূত কেউ যদি কিছু করে থাকে, সেটার জন্য রাজউক (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) করছে। ফায়ার সার্ভিস মাঠে আছে, তাদের নির্দিষ্ট নীতিমালা আছে, সেই নীতিমালা অনুসরণ করা হচ্ছে কি না সে জন্য ফায়ার সার্ভিস ব্যবস্থা নিচ্ছে। যখনই কোনো এজেন্সি ডাকছে, তাদের সহযোগিতার জন্য পুলিশ সেখানে যাচ্ছে। যে এজেন্সি অভিযান করছে, তাদের আঙ্গিকে করছে। সবাইকে একটি ছাতার নিচে এনে একভাবে করা যায় কি না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চিন্তা করছে।'
| প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের পর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। |
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ৩ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির | মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কমিটির সভার পর এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে কমিটির আহ্বায়ক মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (অব.) এ কথা জানান।
কর্মসূচিগুলো হচ্ছে, ২৬ মার্চ ভোরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৭টায় সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের উদ্দেশে যাত্রা এবং সেখানে পুষ্পমাল্য অর্পণ, সাভার থেকে ঢাকায় ফিরে শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ।
এ ছাড়া, ২৫ মার্চ সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ এবং ২৭ মার্চ সকাল ১১টায় রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা।
সারাদেশে জেলা, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়নে পর্যায়ের সব কমিটি এবং দলের অঙ্গসংগঠনগুলোকে স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে পোস্টার প্রকাশ ও জাতীয় দৈনিকে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বিলকিস জাহান শিরিন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, সাখাওয়াত হাসান জীবন, মুক্তিযোদ্ধা দলের জয়নাল আবদীন, সৈয়দ ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক খান, ঢাকা মহানগর বিএনপির ডোমার, ইশরাক হোসেন, তানভীর আহমেদ, যুবদলের রুহুল আমিন আকিল, স্বেচ্ছাসেবক দলের কামরুজ্জামান বিপ্লব, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, তাঁতী দলের আবদুল কালাম আজাদ, মজিবুর রহমান, জাসাসের লিয়াকত আলী, জাকির হোসেন জাকির, ছাত্রদলের রাবিকুল ইসলাম রাকিব ও নাছির উদ্দীন নাছির উপস্থিত ছিলেন।
| মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। |
খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ ৬ মাস বাড়ছে, বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই: আইনমন্ত্রী | বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ ৬ মাস বাড়ছে। তবে চিকিৎসার জন্য তার বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
আইনমন্ত্রী বলেন, 'যেহেতু ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় উপধারা ১ এ যে আবেদন ছিল সেটা নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। এর পরে সেই আবেদনের পরে আর কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার নেই; শুধু মেয়াদ বাড়ানো ছাড়া। ঠিক সেই কারণেই আমি মেয়াদ বাড়ানোর সুপারিশ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফাইল পাঠিয়ে দিচ্ছি।'
মানবিক কারণে সরকার প্রধানের নির্বাহী আদেশে তিনি বাইরে আছেন। সেই একই কারণে বিদেশের পাঠানো কোনো সুযোগ আছে কি না জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, 'যা-ই করতে হবে আইনের মাধ্যমে করতে হবে। যে আইনে তাকে বের করা হয়েছে, তাতে (বিদেশে যাওয়ার) সুযোগ নেই।'
প্রসঙ্গত, করোনা মহামারির ভেতর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ৪০১ (১) ধারা অনুযায়ী কারাদণ্ড স্থগিত করে বিএনপি প্রধানকে মুক্তি দেয়।
এরপর দফায় দফায় তার কারাদণ্ড স্থগিত রাখার মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ঢাকার একটি বিশেষ আদালতে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার পর ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান খালেদা জিয়া।
পরের বছর ২০২১ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট এই মামলায় তার আপিল খারিজ করে দেওয়ার পর তার শাস্তি বাড়িয়ে ১০ বছর করে দেয়।
এর আগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর ঢাকার আরেকটি বিশেষ আদালত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে দোষী সাব্যস্ত করে। তখন তাকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
| বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ ৬ মাস বাড়ছে। তবে চিকিৎসার জন্য তার বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। |
খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত ২৫ মার্চের মধ্যে: আইনমন্ত্রী | বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আজ মঙ্গলবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি (খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড স্থগিত ও তার বিদেশ যাওয়ার অনুমতি চেয়ে) আবেদনটি পড়েছি, কিন্তু আমি বিষয়টি নিয়ে এখনো আমার মতামত দেইনি।'
'২৫ মার্চের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে,' বলেন তিনি।
আরওখালেদা জিয়া বিদেশে যেতে পারবেন কি না, আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত কাল
খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি এবং চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে সম্প্রতি আবেদন করেছে তার পরিবার।
গতকাল সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকে খালেদা জিয়ার আবেদনের বিষয়ে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছিলেন।
আবেদন ও সংশ্লিষ্ট ফাইল তার কাছে সোমবার পৌঁছেছে বলে জানান তিনি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ঢাকার বিশেষ আদালত খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন।
২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। মামলায় তার আপিল খারিজ করে পরের বছর ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট তার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে।
সরকার ছয় মাসের জন্য কারাদণ্ড স্থগিত করার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। এর পর আট দফায় তার মুক্তি বাড়ানো হয় এবং বর্তমানে তিনি গুলশানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আরওখালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী—সরকারের আর কিছু করার নেই
আরওখালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদনে আইন মন্ত্রণালয়ের ‘না’
আরও‘বেগম খালেদা জিয়াকে বাঁচাতে হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে হবে’
খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি এবং চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে সম্প্রতি আবেদন করেছে তার পরিবার।
গতকাল সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকে খালেদা জিয়ার আবেদনের বিষয়ে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছিলেন।
আবেদন ও সংশ্লিষ্ট ফাইল তার কাছে সোমবার পৌঁছেছে বলে জানান তিনি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ঢাকার বিশেষ আদালত খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন।
২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। মামলায় তার আপিল খারিজ করে পরের বছর ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট তার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে।
সরকার ছয় মাসের জন্য কারাদণ্ড স্থগিত করার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। এর পর আট দফায় তার মুক্তি বাড়ানো হয় এবং বর্তমানে তিনি গুলশানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
| বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার। |
নির্বাচনের আগে ২ বিএনএম নেতা সাকিবকে আমার কাছে নিয়ে আসেন: মেজর হাফিজ | দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন রাজনৈতিক দল বিএনএমে যোগাযোগ জন্য বারবার অনুরোধ পেয়েছে জানিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে তাঁর কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে নতুন রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে তিনি সাকিবকে উৎসাহ দেননি।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বনানীতে নিজের বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
'কিংস পার্টি' খ্যাত বিএনএমে যোগদান ও সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ছবি নিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন তিনি।
মেজর হাফিজ বলেন, 'বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে আপনারা অবহিত আছেন, অত্যন্ত নোংরা রাজনীতি। দেশে গণতন্ত্র নেই। নির্বাচনের সময় নানা ধরনের কলা-কৌশল করা হয়। যে দলই ক্ষমতাসীন থাকে, তারা চেষ্টা করে প্রতিপক্ষকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য কিছু লোক ভাগিয়ে এনে নিজেদের বা অন্য কোনো দলে সন্নিবেশ করে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চায়। বিগত ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের আগেও, বেশ আগে থেকেও নানা ধরনের তৎপরতা শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। আড়মোড়া ভেঙে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে থাকে।'
তিনি বলেন, 'এখন রাজনীতি এমনই হয়েছে, জনগণের সঙ্গে মিশে, গ্রামে গিয়ে, নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে কষ্ট করে এমপি হতে, পরিশ্রম করতে এখন আর অনেকেই রাজি না। নির্বাচনের আগে কিংস পার্টিগুলো গড়ে ওঠে। তাদের প্রতিনিধি হয়ে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তাদের অর্থানুকূল্যে সংসদ সদস্য হয়ে আরাম-আয়েশে দিন কাটানোর জন্য অনেকের কাছেই অনেক লোভনীয় বিষয়।
'আমার কাছে যারা আসে সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত তিন-চারজন অফিসার। তারা জানে যে, আমার নির্বাচনী এলাকায় আমার অবস্থান আছে। তারা পরামর্শ দেয় একটি নতুন রাজনৈতিক দল করার জন্য। আমি তাদের বলার চেষ্টা করেছি, রাজনীতিতে কোনো শর্টকাট নেই। সাধারণ মানুষের সংযোগ ছাড়া রাজনীতিতে টিকে থাকা যায় না,' বলেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, 'নির্বাচনের মাস ছয়েক আগে থেকেই যারা সরকারি দল করে, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, তারা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারা দেখেছে, বিএনপির পলিসি ম্যাটারে আমার মাঝে মাঝে দ্বিমত থাকে, যা পত্রপত্রিকায় মাঝে মাঝে প্রকাশিত হয়। তারা ধরে নিয়েছে যে বিএনপি ত্যাগ করার জন্য আমি উন্মুখ হয়ে আছি। সরকারের পক্ষ থেকে যারা যোগাযোগ করেছিল, তাদের বলেছি, ৩২ বছর পরে আমার পক্ষে দল ত্যাগ করা সম্ভব না। আর আমি অসুস্থ, শিগগির দল থেকে অবসর গ্রহণ করব।
'ইতোমধ্যে সামরিক বাহিনীর তিন-চারজন অবসরপ্রাপ্ত সদস্যের উদ্যোগে বিএনএম নামে একটি দল গঠিত হয়। যেটিকে নির্বাচন কমিশনও অনুমোদন দেয়। আমার পরিচিত এই ব্যক্তিরা, আওয়ামী লীগের নেত্রী, শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি, যারা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, তারা বিএনএমে যোগ দেওয়ার জন্য আমাকে অনেকবার অনুরোধ করেছে,' বলেন তিনি।
হাফিজ বলেন, 'প্রচারণা শুরু হয়, আমি হয়তো দল ত্যাগ করব। এ ধরনের একটা সময় এই অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারাই সাকিব আল হাসানকে আমার কাছে নিয়ে আসে। তিনি দেশসেরা ক্রিকেটার, পৃথিবীর সেরা অলরাউন্ডার। সাকিব আমার কাছে এসে রাজনীতিতে যোগদানের ইচ্ছা ব্যক্ত করে। তাকে বিএনএমের দুজন কর্মকর্তা আমার কাছে নিয়ে আসে। আমি বলেছি, রাজনীতি করা তোমার বিষয়, তুমি এখনো খেলাধুলা করছো। রাজনীতি করবে কি না চিন্তা-ভাবনা করে দেখো। আমার কাছ থেকে উৎসাহ না পেয়ে সে চলে যায়। এই ঘটনা নির্বাচনের চার-পাঁচ মাস আগে হবে।'
তিনি বলেন, 'যখন ক্ষমতাসীনদের চাপ বাড়তে লাগল, এমনকি তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ঘোষণাই দিয়ে দিলেন যে হাফিজ সাহেব শিগগির একটি নতুন দল গঠন করবেন, করে নির্বাচনে যাবেন।'
হাফিজ বলেন, 'আমি বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করেছি। নির্বাচনের দুই মাস আগে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছি, আমি ৩২ বছর বিএনপিতে আছি, এই দলেই থাকব। বিএনএম বা অন্য কোনো যোগদান করার সম্ভাবনা নেই। শেষ পর্যন্ত এই দলেই থাকব এবং বর্তমানে আমি অবসর গ্রহণের কথাই চিন্তা করছি। আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। সেটি সারা দেশে প্রচারিত হয়েছে। তারও এক মাস পর অসুস্থতার কারণে আমি বিদেশে যাওয়ার উদ্যোগ নেই। ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে আমাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। আমি আদালতে রিট করি, পরবর্তীতে আমাকে যাওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। ভারতে যাই, তিন মাস সেখানে অবস্থান করি। আমার হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করে নি রিপ্লেস করা হয়।
'আমি হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় জানতে পারলাম যে, ১২ বছর আগের একটি মামলায় আমাকে এবং আলতাফ চৌধুরী সাহেবকে ও আরও কয়েকজনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে,' বলেন তিনি।
হাফিজ আরও বলেন, 'এটি আমি কখনো কল্পনাও করি নাই। একাত্তর সালে বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্যান্টনমেন্টে যখন সেনাবাহিনীর বাঙালি সদস্যরা বিদ্রোহ করে, যশোর ক্যান্টনমেন্টে আমি একাই বিদ্রোহ করেছি। সেখানে আর কেউ ছিল না। আট ঘণ্টাব্যাপী যুদ্ধের সময় সেকেন্ড লে. আনোয়ার হোসেন, আমার একজন তরুণ সঙ্গী সেই যুদ্ধে শহীদ হন। আট ঘণ্টা যুদ্ধের পর বেরিয়ে এসে আমি কুষ্টিয়া অঞ্চলে মুক্তি বাহিনীকে সংগঠিত করি। এভাবে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নয় মাস অংশগ্রহণ করি।
'মুক্তিযুদ্ধে অবদানের পর মার্চ মাসে আমার মতো একজন ৮০ বছর বয়স্ক মুক্তিযোদ্ধাকে কারাগারে পাঠানো হবে মিথ্যা মামলায় এটি আমাকে অত্যন্ত ব্যথিত করেছে,' যোগ করেন তিনি।
| দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন রাজনৈতিক দল বিএনএমে যোগাযোগ জন্য বারবার অনুরোধ পেয়েছে জানিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে তাঁর কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে নতুন রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে তিনি সাকিবকে উৎসাহ দেননি। |
সব পণ্যের দাম ক্রয়সীমার মধ্যে আনতে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে: কাদের | আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যে কয়েকটি পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছিল, এখন কিছু পণ্যের দাম কমেছে। অন্যান্য পণ্যের দামও যাতে মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে আসে সে ব্যাপারে সরকারের চেষ্টার সামান্যতম কমতি নেই।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
গতকাল একজন বিএনপি নেতা বলেছেন, সরকার নড়বড়ে হয়ে গেছে এবং যে কোনো সময় পতন হবে। এ জন্য তারা তাদের বন্ধু রাষ্ট্রের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে—একজন গণমাধ্যমকর্মী দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'তারা বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র বলেছে ইন্ডিয়াকে। বলেছে, তোমরা স্বাধীনতা অর্জনে সাহায্য করেছো, এখন গণতন্ত্র উদ্ধারেও সাহায্য করো। গণতন্ত্র তো আমাদের ঠিকই আছে! আমাদের নির্বাচনও হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'বিএনপির বন্ধুপ্রতীম দেশের কাছে সহযোগিতা চাওয়ার অর্থ তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেওয়ার বিষয়। নির্বাচন ছাড়া তাদের অন্য কোনো বিদেশি শক্তি এসে সহযোগিতা করে ক্ষমতায় বসাতে এটা তো হতে পারে না। ক্ষমতায় বসানোর মালিক এ দেশের জনগণ। জনগণের সমর্থন ছাড়া সরকার পরিবর্তন সম্ভব না।'
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমরা তো একটা দেশ এবং গণতন্ত্রের বিষয়ে আমাদেরও একটা মানদণ্ড আছে। আমাদের গণতন্ত্রকে আমরা পারফেক্ট; পারফেক্ট কেউ না। আমরাও পারফেক্ট এই দাবি আমরা করি না। আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আমি নির্বাচিত না হলে রক্তবন্যা বয়ে যাবে। নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে সাবেক প্রেসিডেন্ট আজ পর্যন্ত মেনে নেয়নি। কাজেই মানদণ্ড কোথায় কী সেটা বোঝা মুশকিল।'
বঙ্গবন্ধু হত্যা পরবর্তী সময়ের পরিস্থিতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এখানে গণতন্ত্রের কোনো চর্চা ছিল না। গণতন্ত্রের কোনো চেহারা আমরা দেখিনি। ২১ বছরে পরে গণতন্ত্র সংগ্রাম-আন্দোলন, আমাদের নেত্রী দেশে ফেরার পর গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলমুক্ত করার লড়াই করেছেন এবং সে সংগ্রামে আমরা বিজয়ী হয়েছি।'
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'তদারকি হচ্ছে। যে কয়েকটি পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছিল, এখন কিছু পণ্যের দাম কমেছে। অন্যান্য পণ্যের দামও যাতে মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে আসে সে ব্যাপারে সরকারের চেষ্টার সামান্যতম কমতি নেই। সরকার সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, অপেক্ষা করুন; আমার মনে হয়, চেষ্টা করলে ফল পাওয়া যাবে।'
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'বিএনপিকে আমরা ভাঙতে যাব কেন? আমাদের কি সমর্থনের ঘাটতি বা কোনো দুর্বলতা আছে যে বিএনপি থেকে লোক এনে সে ঘাটতি আমাদের পূরণ করতে হবে! আওয়ামী লীগের বহু লোক আছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থিতা, আপনারা দেখেছেন গত নির্বাচনের সময় কী রকম ভিড়। এমনকি নারী সংরক্ষিত আসনেও। আওয়ামী লীগের তো এখানে কোনো দুর্ভিক্ষ নেই।
'বিএনএম সৃষ্টি; আমি বলেছি, নির্বাচনে আগে শত ফুল ফোটে। এটা আরেক ফুল ফুটেছে। তারা নির্বাচন করবে, নিবন্ধন নিয়েছে,' বলেন কাদের।
তিনি আরও বলেন, 'নির্বাচন কমিশন তাদের নিবন্ধন দিয়েছে। এখানে আওয়ামী লীগের কোনো প্রকার সহযোগিতা বা আওয়ামী লীগের কোনো অনুরোধ ছিল না। নির্বাচন কমিশনের ওপর কোনো বিধিও আরোপ করেনি যে এটা করতে হবে।'
| আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যে কয়েকটি পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছিল, এখন কিছু পণ্যের দাম কমেছে। অন্যান্য পণ্যের দামও যাতে মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে আসে সে ব্যাপারে সরকারের চেষ্টার সামান্যতম কমতি নেই। |
যেভাবে ভোটের বাক্স পাহারা দিয়েছি, আগামী পাঁচ বছর দেশ পাহারা দেবো: পররাষ্ট্রমন্ত্রী | আওয়ামী লীগ আত্মতুষ্টিতে ভুগবে না মন্তব্য করে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমরা যেভাবে ভোটের বাক্স পাহারা দিয়েছি, রাজপথ পাহারা দিয়েছি, সেভাবে আমরা আগামী পাঁচ বছর দেশ পাহারা দেবো।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, 'বিএনপি নির্বাচন প্রতিহত করতে গিয়ে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়েছে, ট্রেনে আগুন দিয়েছে, তবু নির্বাচন প্রতিহত করতে পারেনি। চমৎকার সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। বিশ্বের ৮০টি দেশ, ৩২টি আন্তর্জাতিক সংস্থা পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে। এসব দেখে বিএনপি এখন হায় হায় করে, লিফলেট বিতরণ করে, আর কী করা যায় ভাবছে।
'আশা করি তারা আর আগের মতো নাশকতার পথে যাবে না। কিন্তু আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। তাই আত্মতুষ্টি নয়, আগামী পাঁচ বছর দেশ পাহারা দেবো আমরা,' বলেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'ব্যাঙ ছোট হলেও আওয়াজ বড়, ছোট কিছু রাজনৈতিক দল এবং পরিত্যক্ত নেতাদের ইদানীং বড় আওয়াজ শোনা যায়। তাদের নাম বলতে চাই না, কিন্তু তাদের সাথে মানুষ নাই।'
| আওয়ামী লীগ আত্মতুষ্টিতে ভুগবে না মন্তব্য করে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমরা যেভাবে ভোটের বাক্স পাহারা দিয়েছি, রাজপথ পাহারা দিয়েছি, সেভাবে আমরা আগামী পাঁচ বছর দেশ পাহারা দেবো। |
খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে পারবেন কি না, আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত কাল | বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার সিদ্ধান্ত দিতে পারে আইন মন্ত্রণালয়।
আজ সোমবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ কথা জানান।
তিনি বলেন, 'খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো এবং বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদনের সিদ্ধান্ত জানতে আগামীকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।'
খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি এবং চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে তার পরিবার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, 'ফাইলটি গতকাল আমার কাছে এসেছে। আমাকে এটি দেখতে হবে, পড়তে হবে। তবে খুব শিগগিরই আবেদনের নিষ্পত্তি করা হবে।'
'আগামীকাল মঙ্গলবারের মধ্যে এটা হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ,' বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'অনেকবার আমি আইনের ব্যাখ্যা দিয়েছি। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী যে শর্তে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে তা ছাড়া আইনত আমাদের আর কিছু করার নেই।'
'যদিও একই আবেদন আবারও করা হয়েছে। খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে পারবেন না এবং ঢাকায় চিকিৎসা নেবেন—এ দুই শর্তে তিনি মুক্তি পেয়েছেন,' বলেন আইনমন্ত্রী।
মন্ত্রী আনিসুল হক আরও বলেন, 'চলাফেরায় তার কোনো অনুমতি নিতে হয় না। তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আইনি অধিকার রয়েছে। কিন্তু আইনগতভাবে অন্য কিছু করার সুযোগ নেই।'
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ঢাকার বিশেষ আদালত খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন।
২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। মামলায় তার আপিল খারিজ করে পরের বছর ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট তার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে।
সরকার ছয় মাসের জন্য কারাদণ্ড স্থগিত করার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। এর পর আট দফায় তার মুক্তি বাড়ানো হয় এবং বর্তমানে তিনি গুলশানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
| বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার সিদ্ধান্ত দিতে পারে আইন মন্ত্রণালয়। |
পাটকল লিজ নয়, আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে চালু করতে হবে: সিপিবি | বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা বলেছেন, পাটশিল্প রক্ষায় রাষ্ট্রীয় পাটকল লিজ নয়, আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে চালু করতে হবে।
আজ শনিবার সকাল ১১টায় সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সিপিবি সভাপতি মো. শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রেসিডিয়াম সভায় উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহিন রহমান, লক্ষ্মী চক্রবর্তী, অধ্যাপক এ এন. রাশেদা, মোতালেব মোল্লা ও পরেশ কর।
সভায় চলমান 'দুঃশাসনের অবসান, ব্যবস্থা বদল ও বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তি সমাবেশ গড়ে তুলতে, বাম গণতান্ত্রিক জোটের আন্দোলন ও অপারাপর বাম প্রগতিশীল শক্তির সঙ্গে কার্যক্রম অগ্রসর করা এবং দ্বিদলীয় লুটেরা রাজনীতির ধারার বাইরে নীতিনিষ্ঠ অবস্থানে থেকে আন্দোলন গড়ে তুলতে' বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
সভায় সারাদেশে চলমান দলের শাখা, উপজেলা, থানা সম্মেলন ও বিভিন্ন সাংগঠনিক কাজের পর্যালোচনা এবং পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
| বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা বলেছেন, পাটশিল্প রক্ষায় রাষ্ট্রীয় পাটকল লিজ নয়, আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে চালু করতে হবে। |
খতিয়ে দেখতে হবে সিন্ডিকেটের সঙ্গে বিএনপির সংযোগ আছে কি না: কাদের | আন্দোলন-নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি সিন্ডিকেট করে সরকারকে বিব্রত করার চেষ্টা করতে পারে—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ যুব মহিলা লীগ ও মহিলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মত বিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'একটি রাজনৈতিক দল হিসেব যখন তাদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থতা নিমজ্জিত হয়েছে, তখন তারা অন্যান্য অনেক কিছুতে জড়িয়ে সরকারকে বিব্রত করা এবং সরকারের কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।'
সিন্ডিকেট কারা করে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, 'এই সরকার জনগণের প্রতিনিধি। শেখ হাসিনার সরকারের সব কর্মকাণ্ড জনস্বার্থকে সমুন্নত রেখে। সরকারকে বিব্রত করার জন্য সিন্ডিকেট থাকতে পারে কিন্তু আমাদের এখন তলিয়ে দেখতে হবে এ ধরনের অপকর্মের সঙ্গে বিএনপির সম্পৃক্ততা আছে কি না।'
কাদের বলেন, 'তারাই (বিএনপি) এসব সিন্ডিকেট করে সরকারকে বিব্রত করা এবং নির্বাচিত সরকারের আজকে যে অগ্রযাত্রা, সেই অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য তারা চেষ্টা করতে পারে। এটা আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে, এই যে সিন্ডিকেট, এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে বিরোধী দল বিএনপির সংযোগ আছে কি না।'
বৈশ্বিক প্রভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'কোন দেশের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে এসেছে? আমি সিঙ্গাপুরে গেছি আমার চেকআপের জন্য। সেখানে বাজারের যে পরিস্থিতি, দুই গুণ, তিন গুণ, চার গুণ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, এমনকি ফলমূলের দাম তিন-চার গুণ বেড়ে গেছে। তিন মাস আগে যা দেখেছি, এখন তার দ্বিগুণ-তিন গুণ হয়ে গেছে। এই অনিশ্চয়তার বিশ্ব পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে।'
আওয়ামী লীগ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এখানে সরকার নিষ্ক্রিয় নেই। প্রধানমন্ত্রী সারাক্ষণ দেশের এ সংকট মোকাবিলায় সময় দিচ্ছেন। আমাদের এখানে নিজেদের কোনো অবহেলা নেই। সরকারের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার যেসব কৌশল, এগুলো কিন্তু সরকার যথাযথভাবে প্রয়োগ করছে।'
গণমাধ্যমকর্মীদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে এই সংকটের মধ্যেও নির্বাচনে তারা আসেনি, আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে; নির্বাচন যখন হয়েই যাচ্ছে, তখন তারা (বিএনপি) বলেছিল বাংলাদেশে নির্বাচনের পর মার্চ মাসে দুর্ভিক্ষ হবে, কোথায় দুর্ভিক্ষ? আমাদের পারচেজিং পাওয়ার আছে। আপনি এখনই দেখেন, আলোকসজ্জা শুরু হয়ে গেছে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত। ঈদ শপিং শুরু হয়ে গেছে। হাতে তো পয়সা আছে। একটা লোক না খেয়ে মারা গেছে? উদাহরণ দিতে পারবেন?'
| আন্দোলন-নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি সিন্ডিকেট করে সরকারকে বিব্রত করার চেষ্টা করতে পারে—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। |
খালেদা জিয়া হাসপাতালে ভর্তি | বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ বুধবার রাতে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান রাত পৌনে ১১টার দিকে দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন। হাসপাতালে ৫ মাস থাকার পর গত ১১ জানুয়ারি তাকে বাসায় আনা হয়েছিল।
কারাদণ্ড পাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসনকে ২০২০ সালে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে তার পরিবারের সদস্যরা সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে আসছেন।
| বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। |
নাটোরে বিএনপি নেতাকে পেটানোর অভিযোগ আ. লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে | নাটোরে জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীনকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রাশেদুল ইসলাম কোয়েল ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের সামনে পেটানো হয় শাহীনকে।
নাটোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
জানতে চাইলে জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু ডেইলি স্টারকে জানান, 'শাহীন আজ সকালে নাটোর জজ আদালতে একটি মামলায় হাজিরা দিতে যান। ফেরার পথে নগরীর ফুলবাগান এলাকায় সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা প্রথমে একটি গাড়ি দিয়ে তার মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। পরে তারা তাকে পিটিয়ে বাম হাত ভেঙে দেয়।'
খবর পেয়ে দলীয় নেতাকর্মীরা শাহীনকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ফোনে যোগাযোগ করা হলে আহত ফরহাদ আলী শাহীন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আওয়ামী লীগের কোয়েল, সেলিম, সজিব, প্রিন্স ও তাদের সহযোগীরা প্রথমে একটি গাড়ি নিয়ে আমার মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। পরে রাস্তায় পড়ে গেলে আমাকে পেটায়।'
শাহীনের পায়ে তারা গুলি করেছে বলেও অভিযোগ তার।
যোগাযোগ করা হলে রাশেদুল ইসলাম কোয়েল অভিযোগ অস্বীকার করে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীনের ওপর হামলা করিনি। কিন্তু আমরা দেখছি তিনি আমাদের বিরুদ্ধে ভুল অভিযোগ করছেন।'
জানতে চাইলে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শাহীনের ওপর আওয়ামী লীগ বা কোনো অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের হামলা করার কোনো প্রশ্নই আসে না। গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ কোথাও তাদের ওপর হামলা করেনি। সিংড়া উপজেলায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে শাহীনের সঙ্গে বিএনপির অন্য গ্রুপের দ্বন্দ্ব আছে। আমার ধারণা তারাই হামলা করতে পারে। দেওয়ান শাহীন বা বিএনপির বক্তব্য সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বক্তব্য। প্রকৃত ঘটনা তা নয়।'
জানতে চাইলে ওসি মিজানুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই দলের নেতাকর্মীরা আহত শাহীনকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করেন।'
'এ ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবে এবং অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেবে,' বলেন তিনি।
| নাটোরে জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীনকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রাশেদুল ইসলাম কোয়েল ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। |
জিম্মি ২৩ জনকে উদ্ধারে তৎপরতা চালাচ্ছে সরকার: নৌ প্রতিমন্ত্রী | সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি ২৩ জনকে উদ্ধারে সরকার তৎপরতা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। মেরিটাইম সেক্টরে আমরা আরও উচ্চতায় চলে গেছি, গত বছর আইএমওতে ক্যাটাগরি-সিতে আমরা কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে। জাতিসংঘ অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক আছে।
'গতকাল যখন আমরা এ সম্পর্কে অবহিত হই, তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছি। আমাদের ডিপার্টমেন্ট অব শিপিং, তাদের সঙ্গে যে আন্তর্জাতিক উইংগুলো কাজ করে, তাদের অবহিত করা হয়েছে। আমাদের যেহেতু সার্বভৌমত্বের দায়িত্বে আছে বাংলাদেশ নেভি, তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। নেভির সঙ্গে অন্যান্য দেশেরও যোগসূত্র আছে,' বলেন তিনি।
সরকারের পক্ষ থেকে সবার সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'প্রথম যে বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়েছি, ২৩ জন নাবিকের জীবন নিরাপদ রাখা এবং জীবন রক্ষা করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে আসাটা আমাদের প্রথম কাজ।'
তিনি বলেন, 'পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নিচ্ছে, কীভাবে আন্তর্জাতিক বিষয়গুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমাদের নাবিকদের রক্ষা করা এবং জাহাজটাকে উদ্ধার করা।'
| সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি ২৩ জনকে উদ্ধারে সরকার তৎপরতা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। |
সরকার বুলেট-বন্দুকের জোরে যা খুশি করছে: মঈন খান | আওয়ামী লীগ সরকার বুলেট-বন্দুকের জোরে যা খুশি করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর শাহজাহানপুরে সদ্য কারামুক্ত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর বাসায় সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গিয়ে তিনি এই কথা বলেন।
আজকে বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে—বিস্ময় প্রকাশ করে রাজনীতি পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'সরকার ভাবছে তারা খুব লাভবান হয়েছে। সরকার ক্ষমতায় আছে, এটা তো আমরা দেখতেই পাচ্ছি; গায়ের জোরে ক্ষমতায় তো থাকাই যায়! গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকা যাবে না কেন? হাতে যদি বন্দুক থাকে, টিয়ার গ্যাস থাকে, হ্যান্ড গ্রেনেড থাকে, জল কামান থাকে তো ক্ষমতায় কেন থাকবে না!'
আওয়ামী লীগ কি জনগণের ভালোবাসায় ক্ষমতায় আছে—প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, 'তারা কি জনগণের ভোট নিয়ে ক্ষমতায় আছে? ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে যে প্রহসনটা হয়েছিল, আপনারা দেখেছেন বাংলাদেশের মানুষ কীভাবে সেই নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে, বর্জন করেছে। তারা নীরবে বর্জন করেছে। বাংলাদেশের মানুষ তো লগি-বৈঠার রাজনীতি করে না, বিএনপিও লগি-বৈঠার রাজনীতি করে না। কাজেই সরকার তাদের বুলেটের জোরে, বন্দুকের জোরে যা খুশি করছে। আমরা নীরব প্রতিবাদ করছি। আমরা শান্তিপূর্ণ রাজনীতি, নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। আমরা বিশ্বাস করি, গণতন্ত্র যদি শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়া হয়, সেটি অর্জন করার বা পুনরুদ্ধার করার প্রক্রিয়াও হতে হবে শান্তিপূর্ণ। গায়ে জোরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে আমরা সেই নীতিতে আমরা বিশ্বাস করি না।'
বিএনপি কোনো দিন ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'আমরা বাংলাদেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থায় পরিবর্তন চাই। যে পরিবর্তনের মাধ্যমে জনগণের সত্যিকার ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরে যাবে। এ দেশে একটি সাজানো, প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে তৈরি সরকারের পরিবর্তে এ দেশে জনগণের সরকার আবার প্রতিষ্ঠা করা হবে। মানুষ ভোটের অধিকার ফিরে পাবে, মানুষ তাদের ন্যূনতম অর্থনৈতিক অধিকার ফিরে পাবে। মানবাধিকার ফিরে পাবে। এ দেশে রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিন্ন মতের কারণে যেন কোনো মানুষকে খুন করা না হয়, গুম করা না হয়।'
| আওয়ামী লীগ সরকার বুলেট-বন্দুকের জোরে যা খুশি করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। |
সন্ধ্যায় এভার কেয়ার হাসপাতালে যাবেন খালেদা জিয়া | নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে যাবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
আজ বুধবার দুপুরে বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবীর খান দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, 'ইফতারের পরে বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বসুন্ধরা এভার কেয়ার হাসপাতালে যাবেন।'
| নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে যাবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। |
সরকার নিজেই সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি: জি এম কাদের | দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা জি এম কাদের বলেছেন, সরকার নিজেই সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউসে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, বৈধ ও অবৈধভাবে টাকা উপার্জনকারী ব্যবসায়ীরা শুধু আমদানির সুযোগ পাচ্ছেন কিন্তু চাহিদা মেটাতে পারছেন না। দেশের নীতি-নির্ধারক কেউ কেউ আমদানির সঙ্গে জড়িত। এসবই সরকারকে সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি করে রেখেছে।
তিনি বলেন, 'ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ছাড়া বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।'
জাতীয় পার্টির বর্তমান সংকট প্রসঙ্গে জি এম কাদের বলেন, 'জাপার বিভাজনের সঙ্গে যারা জড়িত, তারা বহিরাগত।'
আসন্ন উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'জাপা নির্বাচনে অংশ নেবে। রংপুরে জাপার মাঠ উপজেলা নির্বাচনের জন্য ভালো।'
| দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা জি এম কাদের বলেছেন, সরকার নিজেই সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। |
‘জনগণের দাবির মিছিল না ঠেকিয়ে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অভিযান চালান’ | বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি ও ধাপে ধাপে মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণার প্রতিবাদে এবং বিদ্যুৎ খাতের বিপর্যয় ও সংকটের জন্য দায়ীদের চিহ্নিত ও বিচারের দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভের আয়োজন করে।
আজ দুপুর ১২টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাম জোটের সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের পর জ্বালানি মন্ত্রণালয় অভিমুখে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে পল্টন মোড়ে পুলিশি ব্যারিকেডের মুখে পড়ে। এরপর বাম জোটের নেতাকর্মীরা পল্টন মোড়ে বসে পড়ে সমাবেশ করেন।
সমাবেশে বাম নেতারা শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশি বাধার তীব্র নিন্দা জানান।
নেতারা বলেন, 'আমরা জনগণের দাবি নিয়ে বিদ্যুতের দাম কমানোর যৌক্তিক দাবিতে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে যেতে চেয়েছিলাম। আমাদের মিছিলে বাধা দিয়ে প্রকারান্তরে জনগণের দাবির প্রতি অবহেলা করা হলো।'
তারা আরও বলেন, 'জনগণের দাবির মিছিল না ঠেকিয়ে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করুন। বিদ্যুৎ লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। যাদের নীতির কারণে আজ বিদ্যুৎ খাত জনগণের এবং জাতীয় অর্থনীতির গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে তাদেরকে গ্রেপ্তার করুন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।'
'বিদ্যুতের দাম বাড়লে শুধু গ্যাসের বিল বাড়ে না, উৎপাদন খরচও বেড়ে যায়। এমনিতেই সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে, এর ওপর মূল্যবৃদ্ধি। সাধারণ মানুষের ওপর এটা যেন মরার উপরে খারার ঘা', যোগ করেন তারা।
বাম জোটের নেতারা বলেন, 'ইতোমধ্যে বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির বিল ঘণ্টা প্রতি ৩০ টাকা বেড়ে গেছে। আরও বাড়বে বলে জানানো হয়েছে। ক্ষুদ্র শিল্প সংকটের মুখে পড়েছে। প্রকৃত ব্যবসায়ীরা সংকটের কথা তুলে ধরছেন, কিন্তু সরকার এদিকে কর্ণপাত করছে না। ফলে এই মূল্যবৃদ্ধি সর্বত্রই এক অসহনীয় অবস্থা নিয়ে আসবে।'
তারা আরও বলেন, 'সরকার ২৯ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা দিয়ে পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে দাম বাড়িয়েছে। এটা কোনো আইনেই যুক্তিযুক্ত করা যায় না। বিদ্যুৎ জ্বালানির দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে গণশুনানি করার কথা। অতীতে অনুষ্ঠিত গণশুনিতে আমরা এবং দেশের বিশেষজ্ঞরা প্রমাণ করেছিলাম যে সরকার ব্যবসায়ী ও লুটেরাদের সুযোগ দেওয়ার জন্য আমদানি নির্ভর জ্বালানির ওপর বিদ্যুৎ খাত দাঁড় করাচ্ছে, যা দেশের জন্য এক সময় বিপর্যয় ডেকে আনবে। আমরা বিকল্প তুলে ধরেছিলাম।'
'আমরা বলেছিলাম, দেশের স্থল ও সমুদ্র ভাগে গ্যাস উত্তোলন এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির উপরে নির্ভর করে পরিকল্পিতভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে, জ্বালানি খাতকে ঢেলে সাজাতে হবে। এসব কথা না শুনে জ্বালানি ক্ষেত্রে দায় মুক্তি আইন জারি করে লুটপাটের অবাধ ক্ষেত্র তৈরি করা হলো। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে অনেক ব্যবসায়ী কোটি কোটি টাকা ক্যাপাসিটি পেমেন্টের নামে হাতিয়ে নিল। সরকারের নীতির কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে।তাই এই দায় সরকারকেই গ্রহণ করতে হবে', নেতারা বলেন।
বামজোট বলে, 'জ্বালানি মন্ত্রণালয় জনস্বার্থে ভূমিকা নেয় এমন কোনো প্রমাণ নেই। বরং তারা বিদেশি কোম্পানি ও দেশি-বিদেশি লুটেরা ব্যবসায়ীদের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করে। জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের বেতন-ভাতা জনগণের টাকায় হলেও তারা আজ লুটপাটকারীদের সহায়কের ভূমিকা পালন করছে।'
বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, বাসদের (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী। সমাবেশ পরিচালনা করেন সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ।
| বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি ও ধাপে ধাপে মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণার প্রতিবাদে এবং বিদ্যুৎ খাতের বিপর্যয় ও সংকটের জন্য দায়ীদের চিহ্নিত ও বিচারের দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভের আয়োজন করে। |
ভয় লাগে কখন পুলিশ এসে নিয়ে যাবে: মির্জা আব্বাস | জামিনে মুক্তি পেলেও বিএনপি নেতাকর্মীরা এখনো পরোক্ষভাবে বন্দি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
আজ সোমবার দুপুরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, 'বিএনপির সব নেতাকর্মীদের এখনো ইনডাইরেক্টলি বন্দি করে রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা বন্দিই আছি, স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে পারি না। ভয় লাগে কখন পুলিশ আসে, কখন নিয়ে যাবে।'
'দেশের জনগণ-জাতি আজ বন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে,' বলেন তিনি।
গত শনিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে দেওয়া বক্তব্য গণমাধ্যমে বিকৃতভাবে উপস্থাপনের বিষয়টি তুলে ধরতে শাজাহানপুরে নিজ বাসায় এ সংবাদ ব্রিফিং আয়োজন করেন মির্জা আব্বাস।
তিনি বলেন, 'কারাগার থেকে মুক্তির পর গত পরশু আমি একটি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করি। কর্মসূচি ছিল লিফলেট বিতরণ। আমরা জনগণকে বলতে চেয়েছি যে, অন্যায়ভাবে লুটপাটের কারণে দ্রব্যমূল্যের এই যে অসহনীয় ঊর্ধ্বগতি। ওই কর্মসূচিতে আমি কিছু বক্তব্য রেখেছিলাম। আমার কথাবার্তা দুয়েকটি সরকার সমর্থিত সংবাদপত্রে আমরা বক্তব্যের খণ্ডিত কিছু অংশ বিকৃতভাবে তুলে ধরেছেন। তাদের নাম আমি বলতে চাই না। তাতে আমার আমার দলের এবং দেশের অনেক মানুষ একটু বিভ্রান্ত হতে পারে, সেই বিভ্রান্তি কাটানোর লক্ষ্যে আজ আমার এই সংবাদ ব্রিফিং।'
মির্জা আব্বাস বলেন, 'আমার বক্তব্য ছিল এরকম-আওয়ামী লীগ জনগণের কোনো দাবি মেনে নেয়নি। ফলে বিএনপি নির্বাচনে যায়নি। জনগণের দাবি যদি মেনে নিত, বিএনপি নির্বাচনে যেত। তারা কোনো দাবি মানে নাই। এই বক্তব্যটাই কয়েকটি পত্রিকা টুইস্ট করেছে। বহু কথাবার্তা-বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে সেজন্য আজকে আমি আপনাকে এখানে এটা পরিষ্কার করলাম।'
'এই সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মানে না, এই সরকার নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের দাবি মানে নাই, এই সরকার নির্বাচনে কমিশন পুনর্গঠন চেয়েছিলাম সেটাও মানে নাই, ওরা কিছুই মানে নাই। ফলশ্রুতিতে বিএনপি কিংবা এ দেশের গণতান্ত্রিক কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। এ কারণে আপনারা দেখেছেন দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করে ৭ জানুয়ারি ভোটকেন্দ্রে যায়নি। সরকারের বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো নির্বাচনের বাইরে রাখার চেষ্টা করেছে আমি সেটাই বলতে চেয়েছিলাম। এই সরকার থাকলে নির্বাচনে যাব না। কিন্তু আমরা এই বক্তব্যকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যাতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়,' বলেন তিনি।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা আরও বলেন, 'সাংবাদিক ভাইদের অনুরোধ জানাব, দেশটা একটা বিপদের মধ্যে আছে। সরকারের কাছে এ দেশ লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। দেখুন একজন মন্ত্রী বরই দিয়ে ইফতার করেন। সেই মন্ত্রীর বোধহয় অভিজ্ঞতা নাই যে, খালি পেটে বরই খেলে যে কত মারাত্মক সমস্যা হতে পারে, এটা মন্ত্রী জানেন না।'
'জানেন না কারণ, উনারা খেজুর, আঙ্গুর, বিভিন্ন দামি ফল-ফ্রুট দিয়ে ইফতার করেন। জনগণের জন্য বরই খেতে হবে, জনগণের জন্য বেগুনির বদলে পেঁপেনি খেতে হবে, এ সব ওদের জন্য না,' বলেন তিনি।
মির্জা আব্বাস বলেন, 'রমজান শুরু হচ্ছে। আমি আওয়ামী লীগের শাসনামলে কোনো একটা সময় পাইনি যে, এই দেশের লোক স্বস্তিতে রমজান পালন করেছে। আমি দেখলাম পত্রিকায় খবরটি এসেছে, গাজায় যেখানে নারকীয় হত্যাকাণ্ড হয়েছে, সেই গাজায়ও ঈদের মতো রমজান মাস শুরু করেছে। আমাদের দেশে সেই অবস্থা নাই। আমি যখন তারাবির নামাজ পড়তে যাব দেখব বিদ্যুৎ নাই, হঠাৎ করে অন্ধকার হয়ে গেছে। বাজারে কিছু কিনতে যাব, দেখব কিনতে কিনতে টাকা নাই, শেষ হয়ে গেছে।'
তিনি বলেন, 'এখানে যারা সাংবাদিকরা আছেন আপনারা বাজারের খোঁজখবর বেশি রাখেন। আমি বাজারে কম যাই। কিন্তু বাজারের টাকাটা আমাকেই দিতে হয়। আমি খেয়াল করলাম যে টাকা আগে দিতাম, এখন বেশি টাকা দিলেও হয় না। বাজারের জন্য কাউকে টাকা দিলে বলে যে, স্যার এই টাকায় হবে না। যে মাছটা কিনেছিলাম এত টাকা দিয়ে, সেই মাছটা আরও বেশি টাকা দাম। মাঝে মাঝে একটা কৈ মাছের দাম শুনে অবাক লাগে। একটা ডিমের দাম ২০-২৫ টাকা ছিল। জেলখানায় একটা ডিমের দাম ২০ টাকা। আমি শুনে আকাশ থেকে পড়লাম। সব মিলিয়ে রমজান মানুষের জন্য কতটুকু স্বস্তিদায়ক হবে তা নিয়ে অনেক সন্দেহ আছে। রমজানের মধ্যেও জিনিসপত্রে দাম বাড়বে, কোনটাই কমবে না।'
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, 'এবারের মতো জেল কিন্তু আমি কখনো খাটি নাই। সেই ১৯৭৮ সাল থেকে আমার জেল জীবন শুরু হয়েছে। আমি নিরেট মাটির ফ্লোরের মধ্যে শুয়েছি, নট সিমেন্ট, নিরেট মাটির মধ্যে শুয়েছি, অ্যালুমিনিয়ামের ভাঙা-আঁকাবাঁকা প্লেট, অ্যালুমিনিয়ামের গ্লাসে পানি খেতে হয়েছে। প্রথম যখন জেল খাটি তখন আমার বয়স ২৭ বছর, আজ ৭৭ ছুঁই ছুঁই। এবারের জেলখানা ব্যাতিক্রম।'
'সবাই সব সুবিধা পাচ্ছে। যখনই আমরা বলি আমরা একটু বাইরে হাঁটব, আমার ডায়াবেটিস আছে, আমার হার্টের সমস্যা আছে, তখন বলে না স্যার হাটা যাবে না। আমরা বলি, ওই যে হাঁটছে তারা বলেন, ওরা আর আপনারা এক নন। কোনো সুবিধা জেলখানায় আমাদের দেওয়া হয়নি। এমনকি চিকিৎসা সুবিধাও তারা দেয়নি। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কথা বললে বলে, স্যার নিষেধ আছে,' বলেন এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, 'এবারের জেল ছিল সব দিক থেকে কষ্টকর। আমরা সাময়িকভাবে মুক্তি পেয়েছি। আমাদের তো আর খালাস করে দেয়নি। অসুস্থতার জন্য জামিন দিয়েছে। আমরা এখন ওই যে খাঁচায় পোষা মুরগির মতো। যখন দরকার নিয়ে যাবে আবার।'
'আমাদের প্রায় যতগুলো ছেলের জামিন হয়েছে খুশি হয়ে গেছে। আমি তাদের বললাম জামিনে খুশি হয়ো না, খালাস হলে খুশি হইও। বিএনপির সব নেতাকর্মীকে এখনো ইনডাইরেক্টলি বন্দি করে রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা বন্দি,' বলেন মির্জা আব্বাস।
| জামিনে মুক্তি পেলেও বিএনপি নেতাকর্মীরা এখনো পরোক্ষভাবে বন্দি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। |
আমি যুবলীগ-আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ বুঝি না, অপরাধী অপরাধীই: কাদের | পবিত্র রমজান মাসে সংযম না করে বিএনপি যতই কর্মসূচি পালন করবে, ততই তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ সোমবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় দলের সম্পাদকমন্ডলীর এক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
রমজানে সরকারবিরোধী কর্মসূচি চালিয়ে যাবে বিএনপি- এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এতে করে তাদের জনসম্পৃক্ততা অব্যাহতভাবে কমতে থাকবে। রোজার মাসে সংযম না করে বিএনপি যতই আন্দোলন করবে, তারা ততই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।
সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচনে সহিংসতাকারীদের বিষয়ে সরকারের শক্ত অবস্থান তুলে ধরে- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী বলেন, কোনো অপরাধ ও অপকর্ম যদি সরকারি ছত্রছায়ায় হয়ে থাকে তখন সরকার যদি কাউকে ছাড় না দেয়, তখন বুঝতে হবে সরকার এখানে শূন্য সহিষ্ণুতা বজায় রেখেছে। অপরাধীকে অপরাধী হিসেবে বিচার করা হবে। অপরাধী যতই প্রভাবশালী হোক।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি যুবলীগ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ বুঝি না। অপরাধী অপরাধীই। অপরাধী যেই হোক, ছাড় দেয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর।
রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, রমজানের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে একটা বিষয় আছে। সরকার অত্যন্ত সতর্ক ও সর্বাত্মক প্রয়াস চালাচ্ছে যাতে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকে, সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে। শেখ হাসিনার সরকার এ ব্যাপারে সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বিশ্ব সংকটের প্রেক্ষাপটেও এরই মধ্যে জ্বালানি তেলের দাম কমানো হয়েছে। যেটা বিএনপির সময় হয়নি। তারা শুধু দাম বাড়াতে পারে। বিশ্ব সংকটের মধ্যে তেলের দাম কমানো নিয়ে যারা সরকারের প্রশংসা করে না, তারা বিরোধিতার নামে বিরোধিতা করে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, গতবারের মতো এবারও রমজানে সরকারের পাশাপাশি দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোনো ইফতার পার্টি করা হবে না। এর পরিবর্তে সারাদেশে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে গরিব ও সাধারণ মানুষের মাঝে ইফতার, ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করার নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটিসহ ২৩৩টি স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সারাদেশে একযোগে এই নির্বাচন মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে অনেক অপপ্রচার হয়েছে। ভোটার উপস্থিতি নিয়ে অনেক অপবাদ ছড়ানো হয়েছে। কেউ কেউ বিবৃতি দিয়ে এই নির্বাচনের ব্যাপারে বিতর্কিত খবর পরিবেশন করেছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের সাধারণ নির্বাচনের পর স্থানীয় সরকার নির্বাচনে টার্ন-আউট ঈর্ষণীয়। নির্বাচন কমিশন বলছে টার্ন-আউট ৬০ শতাংশ।
বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী বলেন, নিরপরাধ ব্যক্তি এখানে নিপীড়নের শিকার হচ্ছে না। যারা অপরাধী, সন্ত্রাস করে, আগুন সন্ত্রাসে জড়িত জনগণের জানমাল রক্ষায় তাদের ছাড় দেয়া কোনো দেশপ্রেমিক সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। বিএনপি নেতাকর্মীদের জেলে থাকা নিয়ে দলটির শীর্ষ নেতারা ক্রমাগত মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা মানবতার প্রতীক। গত ৪৮ বছরে তার অর্জনের ধারে কাছেও কেউ যেতে পারেনি। বিএনপি হচ্ছে খুনি সন্ত্রাসীদের দল। মানুষ পুড়িয়ে মারার দল। মিস্টার ১০%, দুর্নীতির বরপুত্র তারেক জিয়ার আজকে যে দুর্নাম অর্জন করেছে, জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। বিএনপি তাকে যতই নেতা বানানোর চেষ্টা করুক দেশের জনগণ তাকে নেতা হিসেবে মেনে নেবে না। যতদিন তারেক জিয়া থাকবে, ততদিন বিএনপি স্বাভাবিক কারণে জনবিচ্ছিন্ন ও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে। বিএনপির মিথ্যাচার এখন দলটির নেতাকর্মীরাও বিশ্বাস করে না।
সম্পাদকমন্ডলীর সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ও সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
| পবিত্র রমজান মাসে সংযম না করে বিএনপি যতই কর্মসূচি পালন করবে, ততই তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। |
দেশে-বিদেশে কোথাও এ দেশের নাগরিকের মর্যাদা ও নিরাপত্তা নেই: নুর | গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, 'একটা ভয়ংকর বিপর্যয়ের মধ্যে দেশ। দেশে-বিদেশে কোথাও এ দেশের নাগরিকের মর্যাদা ও নিরাপত্তা নেই। মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের নারী শ্রমিকদের ওপর অমানবিক নির্যাতন, যৌন নিপীড়ন চালানো হলেও কোনো ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়াই আবার সেখানে কর্মী পাঠানো হচ্ছে। প্রবাসী শ্রমিকরা দেশের বাইরে বিপদে পড়লেও দূতাবাসের পক্ষ থেকে সেভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে না।'
বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে 'দেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয়, প্রবাসীদের সম্ভাবনা, সংকট ও সুরক্ষা' শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
নুর দাবি করেন, 'নেপাল থেকে ৭৮ হাজার টাকায় মধ্যপ্রাচ্যে, মালয়েশিয়া শ্রমিকরা গেলেও আমাদের দেশ থেকে যেতে তাদের ৪ থেকে ৬ লাখ টাকা লাগে। এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে শুরু করে এমপি, মন্ত্রী, আমলা—সবাই জড়িত। সবাই কমিশন নেয়।'
প্রবাসী অধিকার পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা নুর বলেন, 'প্রবাসীদের রেমিট্যান্সে দেশ চলছে, অর্থনীতি টিকে আছে। তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। এই যে পত্র-পত্রিকায় লেখা হচ্ছে, টকশোতে আলোচনা হচ্ছে, আমরা কথা বলছি, কিন্তু প্রতিকার হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের অনুরোধ করবো, দেশ ও জাতির জন্য প্রবাসীদের সহযোগিতা করুন, তাদের পাশে দাঁড়ান। প্রবাসীরা ভালো থাকলে দেশ ভালো থাকবে।'
আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, 'মধ্যপ্রাচ্যে যারা থাকে, রেমিট্যান্স পাঠায়—তারাই প্রকৃত রেমিট্যান্স যোদ্ধা। তারা অনেক কষ্ট করে দেশে টাকা পাঠান, জমিজমা ও সম্পত্তি কেনেন। দেশে এসে আবার প্রতারিত হন। এই প্রতারণা যে সবসময় সরকার করে তা নয়, অনেক সময় তার আত্মীয়-স্বজনরাও করেন। সরকার মূলত প্রবাসীদের নিয়ে চিন্তা করে না। বরং প্রবাসীদের পাঠানো টাকা কীভাবে পাচার করতে পারবে, সেই টাকা দিয়ে কীভাবে নিজেদের বাড়ি-গাড়ি করতে পারবে, সেই চিন্তা তাদের।'
সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. এহসানুল হক মিলন বলেন, 'প্রবাসী ভাইদের পাঠানো রেমিট্যান্সে দেশের অর্থনীতি চলে, রিজার্ভ বৃদ্ধি পায়। জোট সরকারের আমলে বেগম খালেদা জিয়া প্রবাসীদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় খুলেছিলেন।'
তিনি বলেন, 'প্রবাসীদের দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যারা ব্যাংকের মালিক, তারা তো রেমিট্যান্স যোদ্ধা নয়। তারা সুবিধা নেওয়ার লোক। কোভিডের সময় বিদেশে থাকা সবাই দেশে টাকা পাঠালো, রিজার্ভ বেড়ে ৪৮ বিলিয়ন হলো। সেই রিজার্ভ কীভাবে, কোথায় নেওয়া যায় সেটি নিয়ে নয়-ছয় করে এখন রিজার্ভ সংকট তৈরি করেছে। নানাভাবে দেশের টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। অন্য দিকে রেমিট্যান্স যোদ্ধা প্রবাসীরা যে দুর্ভোগে আছে সেটা দেখা যায় বিমানবন্দরে, দেশের বাইরে।'
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, 'সরকার প্রবাসীদের সঙ্গে দাসের মতো ব্যবহার করছে। এয়ারপোর্ট ও বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোতে তাদের ভোগান্তির শেষ নেই।'
১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র জাগপার সহসভাপতি রাশেদ প্রধান বলেন, 'সরকার প্রবাসীদের কষ্ট নিয়ে চিন্তিত নয়। বরং বাংলাদেশে কর্মরত ভারতের নাগরিকদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশি চিন্তিত। আমি ছয় বছর উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে ছিলাম। সেখানে দেখেছি প্রবাসীদের কী কষ্ট।'
অনুষ্ঠানে ১০টি সুনির্দিষ্ট দাবি তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো—
১. প্রবাসে মারা যাওয়া সব বাংলাদেশি নাগরিকদের মরদেহ রাষ্ট্রীয় খরচে দেশে নিতে হবে। অনিয়মিত, আনডকুমেন্টেড, দুস্থ ও অসহায় প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীর মরদেহ পরিবহন ব্যয় সংক্রান্ত নীতিমালা, ২০২২ দ্রুত বাস্তবায়ন চাই।
২. প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটাধিকার চাই। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি কূটনৈতিক দূতাবাসগুলোতে বুথ খুলে জাতীয় নির্বাচনে প্রবাসী বাংলাদেশীদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া ও ভোটার কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে।
৩. বিমানবন্দরে প্রবাসী হয়রানি বন্ধ চাই। বিমানবন্দরে প্রবাসী কর্মীদের জন্য ভিআইপি লাউঞ্জের সেবা চাই।
৪. প্রবাসীদের জন্য যুগোপযোগী দ্বৈত নাগরিকত্ব আইন ও পেনশন সুবিধা চাই।
৫. পাসপোর্ট সংশোধনের সুযোগসহ দালালমুক্ত পাসপোর্ট ও দূতাবাস সেবা চাই। পাসপোর্ট সংশোধন সহজ প্রক্রিয়ায় ও দ্রুততার সঙ্গে চাই।
৬. প্রবাসী সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন চাই।
৭. জাতীয় বাজেটে প্রবাসীদের জন্য পাঁচ শতাংশ বিশেষ বরাদ্দ চাই।
৮. বিদেশে কাগজপত্র বিহীন প্রবাসীদের বৈধকরণে সরকারের সহযোগিতা চাই।
৯. বিদেশে প্রবাসীদের জন্য পর্যাপ্ত বাংলাদেশি দূতাবাস ও শ্রম কল্যাণ উইং চাই।
১০. অভিবাসন ব্যয় ১ লাখ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ও প্রবাস ফেরতদের কর্মসংস্থান, সুদমুক্ত পর্যাপ্ত ঋণ সুবিধা চাই।
| গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, 'একটা ভয়ংকর বিপর্যয়ের মধ্যে দেশ। দেশে-বিদেশে কোথাও এ দেশের নাগরিকের মর্যাদা ও নিরাপত্তা নেই। মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের নারী শ্রমিকদের ওপর অমানবিক নির্যাতন, যৌন নিপীড়ন চালানো হলেও কোনো ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়াই আবার সেখানে কর্মী পাঠানো হচ্ছে। প্রবাসী শ্রমিকরা দেশের বাইরে বিপদে পড়লেও দূতাবাসের পক্ষ থেকে সেভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে না।' |
রাজশাহীতে আ. লীগের অন্তর্কোন্দল প্রকাশ্যে | রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের সংবর্ধনা সভায় অন্তর্কোন্দল প্রকাশ পেয়েছে। গতকাল শনিবার রাজশাহী মহানগরীতে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারাকে সংবর্ধনা দেয় আওয়ামী লীগের একাংশ।
নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে অনুষ্ঠিত সভায় অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও নেতারা তাদের বক্তব্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পরাজিত করতে গিয়ে নিজেদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন।
দলের নেতারা জানান, নির্বাচনী লড়াই অনেক আগে শেষ হয়ে গেলেও আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব দীর্ঘায়ত হয়েছে।
রাজশাহী জেলা ও মহানগর কমিটির উদ্যোগে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলা হলেও বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান।
এ ছাড়া, রাজশাহীর দুজন সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান বাদশা ও মো. আসাদুজ্জামান এবং রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকার অনুপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে, সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, সাবেক সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর ইকবাল ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার।
সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম সভায় ফোনে অংশ নেন।
ওমর ফারুক চৌধুরী তার বক্তব্যে রাজশাহী আওয়ামী লীগকে অন্যায়মুক্ত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া দলের অন্য কোনো নেতাকে আমরা সহ্য করব না।'
প্রতিমন্ত্রী আবদুল ওয়াদুদ দারা বলেন, 'আমার প্রতিদ্বন্দ্বী (নির্বাচনে) অপরিচিত ছিল। তারপরও তিনি বিপুল ভোট পেয়েছেন তার অর্থ ও পেছনে রাজনৈতিক শক্তির কারণে।'
সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকারকে তাচ্ছিল্য করেন। তিনি বলেন, 'একজন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কীভাবে নৌকার বিপরীতে ভোট দিতে পারেন?'
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দলের অধিকাংশ নেতাকর্মী সভায় ছিলেন না।'
লিটন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র। তিনি বলেন, 'দলীয় শত্রুতা দেখানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী কাউকে প্রতিমন্ত্রী করেননি।'
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকার জানান, নির্বাচনটি এমনই ছিল যে, দলীয় হাইকমান্ডের সুপারিশে তিনি দলের বিরুদ্ধে গিয়েছেন।
সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের তাচ্ছিল্যের জবাবে তিনি বলেন, 'আমি সন্ত্রাসী ভাষার কী জবাব দেবো।'
এ বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সভার বিষয়ে দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।'
'সভার আয়োজক হিসেবে মহানগর আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করা সঠিক হয়নি' মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'তবে এ সভা আয়োজনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার কথা দল বিবেচনা করছে না।'
| রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের সংবর্ধনা সভায় অন্তর্কোন্দল প্রকাশ পেয়েছে। গতকাল শনিবার রাজশাহী মহানগরীতে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারাকে সংবর্ধনা দেয় আওয়ামী লীগের একাংশ। |
কারাগারে কোনো রাজবন্দি নেই, আছে বিএনপির অ্যাক্টিভিস্ট: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী | কারাগারে কোনো রাজবন্দি নেই, বিএনপির অ্যাক্টিভিস্ট আছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
পুলিশ মেমোরিয়াল ডে ২০২৪ উপলক্ষে আজ শনিবার দুপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'তারা যে বলছে হাজার হাজার রাজবন্দি, রাজবন্দি আমাদের কেউ নেই। আমাদের এখানে বন্দি আছে বিএনপির অ্যাক্টিভিস্ট, যারা প্রধান বিচারপতির বাসায় ভাঙচুর করেছে, যারা আমার পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করেছে, আনসারকে পিটিয়ে হত্যা করেছে, যারা আমাদের মেয়েদের গায়ে হাত দিয়েছে।'
তিনি বলেন, 'আমরা ভিডিও থেকে দেখে তাদের শনাক্ত করেছি, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যেটা পুলিশ বাহিনী করছে। কাজে এখানে অন্যায়ভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, রাজনৈতিকভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।'
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিবেদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ দেশে একটা অবাধ, সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচন হয়েছে। একটি দল ২০১৪ সালে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে অগ্নি সন্ত্রাসের মাধ্যমে নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিল। ক্রমান্বয়ে তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে। ২০০৮ সালে তারা ৩০টির মতো আসন পেয়েছিল, ২০১৮ সালে ছয়টি আসন পেয়েছে।
'মুচলেকা দিয়ে রাজনীতি করবেন না বলে যিনি ইংল্যান্ডে আত্মগোপন করেছেন, তার নির্দেশ অনুযায়ী বিএনপি মহাসচিব পদত্যাগ করেছেন। ওখান থেকে তিনি এ দেশে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। এ দেশের মানুষের, এমনকি দলীয় নেতাকর্মীদেরও ভালো-মন্দ বোধ হয় তিনি চান না,' বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, 'এই দলটি দিন দিন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।'
বাংলাদেশের যে কোনো প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী জানিয়ে তিনি বলেন, 'এ দেশের মানুষ বিশ্বাস করে যতদিন প্রধানমন্ত্রী বেঁচে থাকবেন, ততদিন বাংলাদেশ পথ হারাবে না। এটি তাদের বিশ্বাস ও আস্থার জায়গা। প্রধানমন্ত্রী সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করেছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী অত্যন্ত নিরপেক্ষভাবে কমিশনকে সহযোগিতা করেছে। আপনারা দেখেছেন, অনেক মন্ত্রী ধরাশায়ী হয়েছেন। অনেক বড় বড় নেতারা ধরাশায়ী হয়েছেন। কাজেই আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি, এখানে কোনো ধরনের কারচুপি, কোনো ধরনের সাপোর্ট পেয়েছে বলে আমরা মনে করি না। আমরা দেখিনি।'
বিএনপি বিভিন্ন দেশে নানা ধরনের অপপ্রচার করছে মন্তব্য করে আসাদুজ্জামান বলেন, 'প্রধান বিচারপতির বাসভবন, জাজেস কমপাউন্ডে ভাঙচুর আমরা কখনো দেখি। তারা নিশ্চিত হয়েছে নির্বাচনে এলে জয়ী হতে পারবে না, সে জন্য তারা এ ধরনের অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে এবং বিদেশে যেয়ে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার তারা করে যাচ্ছে। এই অপপ্রচারের সত্যতা এখানে নেই।'
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, 'নির্বাচনের পরে বিদেশি সাংবাদিক যারা এসেছিলেন তারা বলে গেছেন একটা সুন্দর নির্বাচন হয়েছে। আমেরিকার দুএকটি সংস্থা থেকে বলা হয়েছে একটা সুন্দর নির্বাচন হয়েছে। এখন কে কী বললো সেগুলো আমাদের বিষয় নয়।'
গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'কোনো হামলা-মামলা আমাদের পুলিশ বাহিনী, আমাদের পলিটিক্যাল বাহিনী করেনি কারও ওপর, তারাই করেছে। তারা করে যদি অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করে—আমরা এসব বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি।'
বিএনপি উদ্দেশ্যমূলকভাবে আবার ষড়যন্ত্রের ক্ষেত্র তৈরি করার চেষ্টা করছে বলেও মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
| কারাগারে কোনো রাজবন্দি নেই, বিএনপির অ্যাক্টিভিস্ট আছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। |
অভিযোগ আমার দিকে কেন, সেটা জানি না: তাহসীন বাহার | কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচনে ভোট চলার সময় একটি কেন্দ্রে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুই জন গুলিবিদ্ধসহ তিন জন আহতের ঘটনায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র প্রার্থী তাহসীন বাহার বলেছেন, 'যত দূর আমি জানি, আমাদের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ছাত্রলীগের কর্মী গুলি খেয়েছে। অভিযোগ আমার দিকে কেন, সেটা আমি জানি না। আমি তাকে হাসপাতালে দেখতে যাব।'
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্রে বেলা সোয়া ১১টায় ভোট দিতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এসব কথা বলেন তাহসীন বাহার।
ভোট ভালো হচ্ছে জানিয়ে এই প্রার্থী বলেন, অন্য সময়ের চেয়ে এবার বেশি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
বাস প্রতীকের প্রার্থী তাহসীন বাহার কুমিল্লা সদরের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের মেয়ে।
অন্য প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে দিচ্ছে না বাস মার্কার সমর্থকেরা এমন অভিযোগের বিষয়ে সূচনা বলেন, 'প্রথমত আপনারা যারা সংবাদমাধ্যমের আছেন, প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া, এখন কিন্তু সময়টা খুব স্বচ্ছ, মানুষের হাতেও লাইভ ক্যামেরা থাকে, মানুষ লাইভেও চলে যেতে পারে যদি কোনো সমস্যা হয়। আমি বলব, এগুলো শুধু শুধু অপবাদ, অপপ্রচার।'
'এখানে আমরা স্বতন্ত্র বললেও একেকজন একেকটা দল থেকে প্রতিনিধিত্ব করছি। এখানে এমন একটি দল আছে, যে দলের দুজন প্রার্থী আছে, এই দলটা সবসময় এই সরকারের সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে কথা বলে যায়। আমার মনে হয়, সেক্ষেত্রে ব্যাপারটা সে রকম কিছুই হচ্ছে।'
আওয়ামী লীগের আরেক প্রার্থীরও একই রকম অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, 'উনি আমার দলের হলেও আমি জানি না, আমি বলব উনি যেহেতু স্বঘোষিত প্রার্থী, উনার এখানে নির্বাচনে আসার ইনটেনশনটা স্পষ্ট না। আমি তার মুখপাত্র না, এ কারণে উনি কী বলছেন, সেটার উত্তর আমি দিতে পারব না।'
এজেন্ট বের করার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, 'সে বিষয়ে আমি কী বলব, এটা আপনি সাংবাদিক আপনার দেখতে হবে, এটা আমার কাজ না, তাই না?'
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমি এটাকে অবশ্যই মিথ্যা বিবেচনা করব। কারণ সে রকম কিছু যদি হতো, আপনারা সাংবাদিক, আপনারা সবচেয়ে ভালো বলতে পারতেন।'
ভোটের ফল নিয়ে তিনি বলেন, 'আমি আমার ভোটের মাঠ প্রচারের শুরু থেকে খুবই ভালো দেখছি। জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।'
| কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচনে ভোট চলার সময় একটি কেন্দ্রে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুই জন গুলিবিদ্ধসহ তিন জন আহতের ঘটনায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র প্রার্থী তাহসীন বাহার বলেছেন, 'যত দূর আমি জানি, আমাদের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ছাত্রলীগের কর্মী গুলি খেয়েছে। অভিযোগ আমার দিকে কেন, সেটা আমি জানি না। আমি তাকে হাসপাতালে দেখতে যাব।' |
কালু-মজনু-মুন্না জেলে গিয়েছিল এক মামলায়, বেরিয়েছে ২২টি নিয়ে: মির্জা আব্বাস | বিএনপিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে দুই বছর আগে থেকে গ্রেপ্তার শুরু করা হয় বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
বিদ্যুৎ, গ্যাস ও দ্রব্যমূল্য কমানোর দাবিতে আজ শনিবার নয়াপল্টনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণার আগে তিনি এ কথা বলেন।
কারাবাসের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, 'জেলখানায় আমাদের এত কর্মী ছিল; ১৯৭৮ সাল থেকে এ যাবত বহুবার জেলে গেছি আমি। এরশাদের অত্যাচার সয়েছি, এই সরকারের অত্যাচার গত ১৫ বছর সয়েছি, বারবার গ্রেপ্তার হয়েছি কিন্তু জেলখানায় এবারের নিদারুণ, করুণ অবস্থা আমি বর্ণনা করতে পারব না। এত করুণভাবে আমার নেতাকর্মী ভাইদের রাখা হয়েছিল।'
তিনি বলেন, 'রাজনীতি করি, গ্রেপ্তার হবো, স্বাভাবিক ব্যাপার কিন্তু নির্যাতন ও অত্যাচার যেভাবে সীমা ছাড়িয়ে গেছে এটা সহ্য করা যায় না, বর্ণনাও করা যায় না। তারপরও আমাদের নেতাকর্মী ভাইদের মনোবল হারায়নি। তারা আশায় আছে, যুদ্ধ করবে এবং গণতন্ত্রকে তারা মুক্ত করবে। আমরাও আশা করি, আমাদের এই গণতান্ত্রিক আন্দোলন, এই অহিংস আন্দোলন, গণতন্ত্র উদ্ধারের আন্দোলন চলবে।'
তিনি বলেন, 'গণতান্ত্রিক আন্দোলন কখনো ব্যর্থ হয়নি। সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত হতে পারে কিন্তু সার্বিকভাবে কখনোই ব্যর্থ হয় নাই। মুসোলিনি বহুদিন রাজত্ব করেছে কিন্তু পরিণতি হয়েছে ভয়াবহ। জনগণের আন্দোলনের মুখে কোনো ফ্যাসিস্ট সরকার টিকে থাকতে পারে নাই।'
বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চক্রান্ত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'দুই বছর আগে থেকে আমাদের নেতাকর্মীদের বেছে বেছে গ্রেপ্তার শুরু করা হয় এবং একটি নকশা অনুযায়ী আমাদের বহু নেতাকে আগেই গ্রেপ্তার করা হয়। আমাদের ভুল হয়েছিল, আমরা বুঝতে পারিনি। কালু, মজনু, মুন্না জেলে গিয়েছিল একটি মামলা নিয়ে, জেল থেকে বেরিয়েছে ২২টি মামলা নিয়ে। তাদের পরিকল্পনা যাতে বিএনপি নির্বাচনে না আসে। আমাদের কোনো দাবি-দাওয়া তারা মানবে না, এই দেশের জনগণের কোনো কথা তারা শুনবে না।'
তিনি বলেন, 'এই যে অবস্থা, এটাকে সরকার বলা যাবে না। জোর করে জনগণের ভোটের বাইরে এরা ক্ষমতায় টিকে আছে। ক্ষমতায় টিকে আছে লুটপাট করার জন্য, চুরি করার জন্য, এ দেশের মানুষকে কষ্ট দেওয়ার জন্য।'
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আব্বাস বলেন, 'আমাদের মনোবল ঠিক রাখতে হবে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নিজেদের মধ্যে গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটাতে হবে। এই সরকারের পতন ঘটানোর জন্য ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।
'প্রিয় ভাইরা, অনেক সহ্য করেছেন, আরও সহ্য করতে হবে। যদি বলেন কতদিন সহ্য করতে হবে? এটা বলা সম্ভব না। তবে সহ্য করতে হবে,' বলেন তিনি।
| বিএনপিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে দুই বছর আগে থেকে গ্রেপ্তার শুরু করা হয় বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। |
কুমিল্লায় গুলিবিদ্ধ ২, তাহসীন বাহার-নিজাম সমর্থকদের সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা আটক | কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুই জন গুলিবিদ্ধের ঘটনায় ছাত্রদলের এক নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে তাহসীন বাহার এবং নিজাম উদ্দিন কায়সারের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে তিন জন আহত হন।
এ ঘটনায় কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী আবু সুফিয়ান অন্তুকে (২৭) রাজাপাড়ায় তার বাসার সামনে থেকে আটক করে পুলিশ।
আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসানের নেতৃত্বে একটি দল তাকে আটক করে।
তবে আটক অন্তুর মায়ের দাবি, সংঘর্ষের ঘটনায় তার ছেলে জড়িত নয়। অন্তু সেসময় বাড়িতে ছিল।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, এখানে একটি সংঘর্ষের ঘটনায় দুই জন আহত হয়েছে বলে জেনেছি। ঘটনার পরই আমরা সাঁড়াশি অভিযানে নেমেছি।
অন্তুকে কেন বা কোন অভিযোগের ভিত্তিতে আটক করা হয়েছে সে ব্যাপারে কিছু বলতে রাজি হননি এই পুলিশ কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, আহতরা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে। এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে শনাক্তের চেষ্টা করছি।
আজ সকালে কুমিল্লা শহরতলীর নেউরা মুন্সী এম আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ দুই ব্যক্তির নাম জহিরুল ইসলাম ও মো. তুহিন।
গুলিবিদ্ধ জহিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, 'আমি ভোটকেন্দ্রের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এ সময় বাস মার্কার নেতাকর্মীরা গুলি চালায়।'
গুলিবিদ্ধ দুই জন তার কর্মী-সমর্থক বলে দাবি করেছেন ঘোড়া প্রতীকের মেয়র প্রার্থী নিজামউদ্দিন কায়সার।
তবে ডেইলি স্টার গুলিবিদ্ধ দুই জনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে একজনের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়, আরেকজন ফোন কল ধরেননি।
ছাত্রদল নেতা অন্তুকে আটকের প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুল হান্নান ভুঁইয়া দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, 'আমরা কিছুক্ষণ আগে ভোট দিয়ে আসছি। ভোট দেওয়ার আগে ধাওয়া পালটা ধাওয়া হয়েছে আমরা জানতে পারি নাই কারা করছে। অন্তুসহ আমরা নির্বাচনী কেন্দ্রের অনেক বাইরে অবস্থান করছিলাম। হঠাৎ পুলিশের গাড়ি এসে অন্তুকে তুলে নিয়ে গেল। তখন আমরা পুলিশকে বললাম কেনো আটক করলেন? তারা সেই ব্যাখ্যা দিতে পারেন নাই। পুলিশ জানিয়েছে তারা তদন্ত করে কিছু পেলে অন্তুর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে আর সম্পৃক্ততা না পেলে তাকে ছেড়ে দেবে।'
| কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুই জন গুলিবিদ্ধের ঘটনায় ছাত্রদলের এক নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। |
নতুন নির্বাচন দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিন: গণঅধিকার পরিষদ | গ্যাস, বিদ্যুতের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার, সিন্ডিকেট ও বাজার কারসাজিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসাসহ ৫ দফা দাবিতে গণসমাবেশ করেছে ঢাকা মহানগর গণঅধিকার পরিষদ।
আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকি মোড়ে এ গণসমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশ শেষে পুরানা পল্টন মোড়, গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট, প্রেসক্লাব হয়ে পুরানা পল্টন পর্যন্ত মিছিল করে গণঅধিকার পরিষদ।
সমাবেশে সংগঠনের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, 'বাস থেকে সরকারি দলের নেতাকর্মী ও পুলিশ মিলে এক হাজার কোটি চাঁদা তোলে। যার ভাগ এমপি, মন্ত্রীসহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থরা সবাই নেয়। প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিরা মাদকের বিরুদ্ধে জোরালো বক্তব্য দেয়। অথচ তারাই মাদক ব্যবসায়ীদের প্রশ্রয় দেয়, সহযোগিতা করে। পুলিশ চাইলে ৭ দিনে মাদক বেচাকেনা বন্ধ হবে।'
তিনি বলেন, 'সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। সরকার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না। কারণ সিন্ডিকেটের হোতারা সরকার চালায়। চিনি আমদানি করে দেশের ৫টি প্রতিষ্ঠান। তাদের ধরলে চিনির দাম বাড়বে না। কতিপয় দুর্বৃত্ত আমদানি-রপ্তানির নামে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে। দুদক তাদের কিছু করতে পারে না। সমন্বয়ের নামে জনগণের পকেট কাটতে সরকার গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির মূল্য বাড়াচ্ছে।'
নুরুল হক নুর আরও বলেন, 'ভারত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি সর্বত্র নিয়ন্ত্রণ করছে। ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করতে হবে। ভারতীয় পণ্য বয়কটের আন্দোলন দেশের সব জায়গায় ছড়িয়ে দিতে হবে।'
'আন্দোলনের কৌশলে হয়ত আমাদের ভুল হয়েছে। তবে ৯৫ শতাংশ জনগণ এই সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। সরকারকে বলব, অনতিবিলম্বে নতুন নির্বাচন দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার-গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিন,' বলেন তিনি।
সমাবেশে দলের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, 'নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বাড়িয়ে সরকার জনগণের সঙ্গে ভাঁওতাবাজি শুরু করেছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বলেছিল, ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে আর ঘরে ঘরে চাকরি দিবে। কিন্তু চালের কেজি ৬০-৭০ টাকা আর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতেও ব্যর্থ হয়েছে। এই ডামি সরকারের আমলে সাংবাদিক থেকে শুরু করে কোনো পেশার মানুষ ভালো নেই।'
তিনি বলেন, 'আমাদের কিছু ব্যর্থতা শিকার করে নেওয়া উচিত যে, আমরা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারছি না। ঘর থেকে গ্রেপ্তার না হয়ে রাজপথে গ্রেপ্তার হওয়ার মানসিকতা অর্জন করতে হবে। ১৯৯০ এ ডাক্তার মিলন, নূর হোসেনরা রক্ত না দিলে এরশাদের পতন হতো না। সুতরাং যুব সমাজকে রক্ত ও জীবন দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে লড়াইয়ে নামতে হবে। তাহলেই গণতন্ত্র ফিরে আসবে এবং দেশের জনগণ মুক্তি পাবে।'
গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক করিম শাকিলের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, ফাতিমা তাসনিম, সহ-সভাপতি বিপ্লব কুমার পোদ্দার, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন প্রমুখ।
| গ্যাস, বিদ্যুতের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার, সিন্ডিকেট ও বাজার কারসাজিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসাসহ ৫ দফা দাবিতে গণসমাবেশ করেছে ঢাকা মহানগর গণঅধিকার পরিষদ। |
‘আ. লীগ নেতাকর্মীরা ভয়ংকর নারী নিপীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে’ | বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, 'গত ১৬ বছরের কুশাসনে সবচেয়ে বেশি লাঞ্ছিত-অপমানিত হয়েছেন নারীরা।'
আজ শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, 'আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস এমন এক সময় পালিত হচ্ছে যখন বাংলাদেশে নারীরা ঘরে-বাইরে-কর্মস্থলে সর্বত্রই নির্যাতিত-নিপীড়িত-লাঞ্ছিত-খুনের শিকার হচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হাতে। কর্তৃত্ববাদী শেখ হাসিনার গত ১৬ বছরের কুশাসনে সবচেয়ে বেশি লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়েছেন নারীরা।'
তিনি বলেন, 'রাজনৈতিক চরিত্র হারিয়ে আওয়ামী লীগ এবং তাদের অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সারাদেশে ভয়ংকর নারী নিপীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। রাষ্ট্রক্ষমতার আশ্রয়, প্ররোচনায় এদের অসভ্যতা রুচিহীন বর্বর শক্তিতে পরিণত করেছে। বর্তমান নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে শুধু রাত-বিরাতে নয়, দিনে দুপুরে পথ চলতে নারীসহ সাধারণ মানুষের গা ছমছম করে।'
'নবধারার আওয়ামী বাকশাল রাজ্যে নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতার মাত্রায় এখনো কোন ছেদ যতি টানা হয়নি, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় তা দিন দিন বেড়েই চলেছে,' যোগ করেন তিনি।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) সর্বশেষ পরিসংখ্যানের উল্লেখ করে রিজভী বলেন, 'দেশে গত ১৩ মাসে এক হাজারের বেশি নারী ও শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। গত বছর নারীর প্রতি সহিংসতা ছিল উদ্বেগজনক বিষয়। এ সময়ে সারাদেশে ৫৭৩ জন নারী ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে কোনো কোনো নারীকে। এসব ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন ১২২ পুরুষ। প্রতিবাদ করতে গিয়ে আটজন নারী-পুরুষ খুন হন।'
তিনি বলেন, 'দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া একজন মহীয়সী নারী, যিনি অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে বারবার মুক্ত করেছেন। যিনি বাংলাদেশ নারী সমাজের অগ্রগতিতে অসামান্য অবদান রেখেছেন। অথচ তাকে সীমাহীন হয়রানি ও হেনস্তা করার জন্য অন্যায় ও বেআইনিভাবে মিথ্যা মামলায় আটক করে রাখা হয়েছে। সব মৌলিক মানবাধিকার, সাংবিধানিক অধিকারকে পদদলিত করে তাকে সুচিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে।'
'চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দিয়ে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে বিনা ভোটের ডামি সরকার। পদ্মা সেতু থেকে ফেলে দিয়ে হত্যার হুমকিও দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তার প্রধান টার্গেট এখন দেশনেত্রী। অন্যায়ভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করে শুধু একজন রাজনৈতিক নেত্রীকেই নয় বরং বাংলাদেশের কণ্ঠকেই রুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। শেখ হাসিনা নারী অধিকারের কথা বললেও, আদতে সব ভাঁওতাবাজি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থাকলে ভয় প্রাধান্য লাভ করে,' বলেন তিনি।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা আরও বলেন, 'শেখ হাসিনার চলমান দুঃশাসনে কারও রেহাই নেই। আপনি রাজনীতি করেন কিংবা না করেন, কেউই নিরাপদ নন। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহারও রেহাই মেলেনি। কারণ শেখ হাসিনার ক্ষমতার নাটাই দেশের জনগণ কিংবা বাংলাদেশের সীমানার ভেতরে নয়। শেখ হাসিনার ক্ষমতার নাটাই বাংলাদেশের সীমানার বাইরে। সুতরাং, আপনার কিংবা আপনাদের স্বার্থ দেখা তাবেদার শেখ হাসিনার পক্ষে সম্ভব নয়। এমনকি তাবেদার সরকার আপনার স্বার্থ দেখার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছে।'
'সরকার কাউকে মানুষ বলেই গণ্য করছে না' মন্তব্য করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, 'শেখ হাসিনার থাবা থেকে বর্তমানে একজন নোবেল লরিয়েটেরও রেহাই মিলছে না। এক যুগের বেশি পার হলেও এখনো সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচার হয়নি। গত ১৫ বছরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর একটি হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত কিংবা বিচার হয়নি। দেশে সংঘটিত একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনারও বিচার হয়নি। ব্যাংকখেকোদের বিচার হয়নি। অথচ ঠুনকো অভিযোগে একজন নোবেল লোরিয়েটকে প্রায় প্রতিদিন আদালতের বারান্দায় ঘুরতে হচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়া, ড. ইউনূস, শহিদুল আলম, দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ এবং ভিন্নমতের মানুষের প্রতি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নির্মম আচরণ দেখেও এখনো যারা না দেখার ভান করছেন কিংবা এখনো যারা শেখ হাসিনার অবিচার-অনাচারের বিরুদ্ধে সাধ্যমতো প্রতিবাদী হয়ে উঠছেন না আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি চুপ করে থেকে কেউ নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম হবেন না।'
তিনি বলেন, 'দেশের সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিক হত্যা, এমনকি বিজিবি সদস্য মেরে ফেললেও বাংলাদেশের প্রতিবাদ করার সাহস নেই। বরং, দিন দুয়েক আগে "ডামি প্রধানমন্ত্রীর ডামি উপদেষ্টা"র একটি বক্তব্য রীতিমতো বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য উদ্বেগজনক। তিনি বলেছেন, সীমান্তে মৃত্যুর ঘটনা হত্যাকাণ্ড নয়, সীমান্ত হত্যাকাণ্ড নাকি দুর্ঘটনা।'
রিজভি বলেন, 'দেশে এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। প্রতিদিন বেড়েই চলছে চাল-ডাল-লবণ-তেল-চিনি-পেঁয়াজ-রসুন, তরি-তরকারির দাম। এমনকি রোজাদারদের জন্য ইফতারের প্রধান অনুষঙ্গ খেজুরের দাম পর্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার "ডামি সরকার" বলছে খেজুর নাকি বিলাসী পণ্য। এই অজুহাতে খেজুর আমদানির ওপর অস্বাভাবিক হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।'
'সাধারণ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বর্তমানে দেশে ১১০ টাকা কেজি দরে আমদানি করা খেজুরের শুল্ক দিতে হয় ১৪০ টাকা। ১২০ টাকা কেজি দরে আমদানি করা খেজুরের শুল্ক দিতে ২১০ টাকা। প্রশ্ন হচ্ছে, খেজুরের ওপর এমন অস্বাভাবিক হারে শুল্ক আরোপ করলে বাজারে খেজুরের দাম কমবে কী করে? সুতরাং, অন্তত রমজান মাসের জন্য হলেও খেজুর আমদানির ওপর শুল্ক মওকুফ সময়ের দাবি,' যোগ করেন তিনি।
রিজভী আরও বলেন, 'দুর্নীতিবাজ সরকার তথাকথিত মেগা প্রজেক্ট কিংবা ব্যক্তি বিশেষের "মূর্তি কিংবা ভাবমূর্তি"' প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে বছরের পর বছর ধরে অকারণে রাষ্ট্রের শত শত কোটি টাকা খরচ করেই চলেছে। দুর্নীতির মেগা প্রজেক্ট কুইক রেন্টালের মাধ্যমে ভর্তুকি কিংবা ক্যাপাসিটি চার্জের নামে দলীয় দুর্নীতিবাজদেরকে কমপক্ষে ১ লাখ কোটি টাকা দিয়েছে। অথচ, দেশের কোটি কোটি মুসলমানদের ইফতারের জন্য খেজুর আমদানির উপর ভর্তুকি দূরে থাক উল্টো খেজুর আমদানির উপর অস্বাভাবিক হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।'
'মাংসের বদলে কাঁঠাল, পেঁয়াজ ছাড়া তরকারি, পেঁপে দিয়ে বেগুনি বানানোর হাস্যকর পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা জনগণের সঙ্গে মশকরা করেছেন। আওয়ামী লীগের "ডামি" মন্ত্রী-এমপিরা জানে না সব জিনিসের "ডামি" হয়না। 'বরই' কখনো 'খেজুরের ডামি' হতে পারেনা। দেশের জনগণ বিশ্বাস করে "ডামি সরকার", অত্যন্ত সূক্ষ্ম এবং পরিকল্পিতভাবেই দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় সংস্কৃতি এবং সামাজিক রীতি ও মূল্যবোধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে,' যোগ করেন তিনি।
| বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, 'গত ১৬ বছরের কুশাসনে সবচেয়ে বেশি লাঞ্ছিত-অপমানিত হয়েছেন নারীরা।' |
দেড় মাস দেখলাম, বাকি সময়েও জনগণের কথা সরকারের কানে যাবে না: ফারুক | সরকার চায় না বাংলাদেশের মানুষ সুখে থাকুক মন্তব্য করে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, দেড় মাস দেখলাম, মনে হলো বাকি সময়েও জনগণের কথা তাদের কানে যাবে না।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ফারুক বলেন, 'গত ১৫ বছর ধরে আমরা সরকারকে বলে আসছি, গরিব মানুষ যাতে পেট ভরে খেতে পারে, সচ্ছল মানুষ যেন রোজার সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রগুলো কিনতে পারে। সরকার কর্ণপাত করে না, নিজেদের হালুয়া রুটি-ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য যা যা দরকার তাই করে।
'কারণ তারা চায় না বাংলাদেশের মানুষ সুখে থাকুক, তারা চায় না বাংলাদেশের মানুষ পেট ভরে দুবেলা ভাত খাক। তারা শুধু চায় এমন একটি নির্বাচন, যে নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ সদস্য তৈরি করা হবে—যারা ব্যবসাবান্ধব হবে। ব্যবসায়ী হবে, সরকারকে টাকা দেবে,' বলেন তিনি।
ফারুক বলেন, 'এমন সরকারের কাছে আমরা দাবি পেশ করি এই জন্য যে, আমরা জনগণের দল, আমরা জনগণের কথা বলি। জনগণের জন্য আমরা রাস্তায় মিছিল করি।'
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দেড় মাস অতিবাহিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এই সরকারের কার্যক্রম দেখে মনে হলো, আগামী যে কদিনই তারা ক্ষমতায় থাকুক, জনগণের কথা তাদের কানে যাবে না। তারা মেগা প্রকল্পের কথা বলবে, তারা উন্নয়নের কথা বলবে। যেখানে টাকা পাওয়া যায়, যেখানে উন্নয়নের নামে টাকা চুরি করা যায়, সেই কথাগুলো সরকার বলবে—জনগণের, গরিবের কথা তারা শুনতে চায় না।'
এই বিএনপি নেতা বলেন, 'আমরা খাতায় লিখে রাখছি, হিসাব-নিকাশ আমাদের কাছেও আছে। ১৫ বছর অত্যাচার করেছেন, জেলখানায় ১৫ জনকে মেরে ফেলেছেন, অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুম করেছেন, ২৯ হাজার নেতাকর্মীকে জেলে পুরেছেন। সব কিছু আমাদের মনে আছে।'
তিনি আরও বলেন, 'সামনে সুদিন আসবে। রাস্তায় লড়ব, গণতন্ত্র আনব।'
| সরকার চায় না বাংলাদেশের মানুষ সুখে থাকুক মন্তব্য করে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, দেড় মাস দেখলাম, মনে হলো বাকি সময়েও জনগণের কথা তাদের কানে যাবে না। |
যারা ৭ মার্চ পালন করে না, তারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে কি না সন্দেহ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী | বাংলাদেশের ইতিহাস-স্বাধীনতা ৭ মার্চ ছাড়া হতে পারে না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যারা এটি মানে না বা পালন করে না, তারা আসলে স্বাধীনতাতে বিশ্বাস করে কি না সন্দেহ।
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
পরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, '৭ মার্চের ভাষণ শুধুমাত্র একটি ভাষণ নয়। এটি একটি জাতির মুক্তির লক্ষ্যে রচিত একটি মহাকাব্য। জাতির পিতা ঘোষণা করেছিলেন এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। তিনি এ-ও বলেছিলেন যার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থেকো শত্রু মোকাবিলা করতে হবে। অর্থাৎ তিনি নিরস্ত্র জাতিকে সশস্ত্র জাতিতে রূপান্তরিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং ২৬ মার্চ পর্যন্ত সময় নিয়েছিলেন এরপর তিনি চূড়ান্ত স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন।'
তিনি বলেন, 'প্রকৃতপক্ষে ৭ মার্চেই তিনি স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেদিন ঢাকা থেকে পাকিস্তান গোয়েন্দা সংস্থা রিপোর্ট করেছিল রাওয়ালপিন্ডিতে যে, চতুর শেখ মুজিব কার্যত পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করে দিয়েছে কিন্তু আমাদের চেয়ে তাকিয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার ছিল না। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু এমনভাবে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন বা ঘোষণা দিয়েছিলেন তাতে করে তাকে অভিযুক্ত করারও সুযোগ ছিল না।
'যারা আজকে ৭ মার্চকে অস্বীকার করে, তারা আসলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে কতটুকু বিশ্বাস করে সেটিই হচ্ছে সন্দেহজনক। আজকে বিএনপিসহ তাদের মিত্ররা ৭ মার্চ পালন করে না। বাংলাদেশের ইতিহাস-স্বাধীনতা ৭ মার্চ ছাড়া হতে পারে না। সুতরাং যারা এটি মানে না বা পালন করে না, তারা আসলে স্বাধীনতাতে বিশ্বাস করে কি না সন্দেহ,' যোগ করেন তিনি।
| বাংলাদেশের ইতিহাস-স্বাধীনতা ৭ মার্চ ছাড়া হতে পারে না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যারা এটি মানে না বা পালন করে না, তারা আসলে স্বাধীনতাতে বিশ্বাস করে কি না সন্দেহ। |
ঠাকুরগাঁওয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান | চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান।
বুধবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া সালেহিয়া মাদ্রাসা মাঠে জানাজা শেষে ওই গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে দাফন করা হয়। সকালে ঠাকুরগাঁও শহরের পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে প্রথম জানাজা হয়।
চিকিৎসার জন্য বিদেশে থাকায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম জানাজার আগে মুঠোফোনের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে দেন। তিনি তৈমুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি তার রাজনৈতিক জীবনের একজন বিশ্বস্ত সহযোদ্ধাকে হারালেন।
রোববার বিকেলে ভারতের মুম্বাইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে মারা যান তৈমুর রহমান। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর । তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ ও ফুসফুসের জটিলতাসহ অন্যান্য শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন।
গত বছরের ডিসেম্বরে তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। সেখানে তার ফুসফুসে টিউমার অপসারণের পর ক্যান্সার শনাক্ত হয় ।
এরপর থেকে তিনি মুম্বাইয়ে অবস্থান করেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
তৈমুর রহমান ২০০৯ সালে ঠাকুরগাঁও জেলা শাখা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। মির্জা ফখরুল তখন ওই কমিটির সভাপতি হন। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে দলের জেলা শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং মৃত্যু পর্যন্ত এই দায়িত্বে ছিলেন।
তিনি তিন মেয়াদে রুহিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং এক মেয়াদে সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
| চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান। |
রাজনীতি এখন দুর্বৃত্তদের হাতে বন্দি: সিপিবি | বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা বলেছেন, রাজনীতি যখন কেনাবেচা, ভাগবাটোয়ারা, আখের গোছানো এবং ক্ষমতা কুক্ষিগত করার হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে, তখন নীতির প্রশ্নে আপসহীন থেকে শ্রমিক-কৃষক, মেহনতি মানুষের পার্টি সিপিবি মানুষ ও প্রকৃতির মুক্তির লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
সিপিবির ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আজ বুধবার বিকেল ৪টায় রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তিভবনের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে নেতারা এ কথা বলেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম। বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ। এ সময় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহীন রহমান, অধ্যাপক এ এন রাশেদা, পরেশ কর, সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রেজা, কোষাধ্যক্ষ ডা. ফজলুর রহমানসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, 'বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় সিপিবি সবচেয়ে অপসহীন ও মেহনতি মানুষের স্বার্থে যোগ্য রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। আর এই শক্তি ও দৃঢ়তা অর্জন করেছে তার ৭৬ বছরের লড়াই-সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে।'
তিনি আরও বলেন, 'স্বাধীনতার ৫৩ বছরে আমরা বাংলাদেশে অনেক কিছুই দেখলাম। এখন রাজনীতি দুর্বৃত্তদের হাতে বন্দি। এরাই পালাক্রমে ক্ষমতা দখল করে আছে। এদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। একইসঙ্গে গণতন্ত্রহীনতা, লুটপাটতন্ত্র, সাম্প্রদায়িকতা, সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধেও ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ করে তুলতে হবে। কমিউনিস্ট পার্টিই একমাত্র জনগণের পক্ষের শক্তি এবং প্রকৃত বিরোধীদল। কারণ নীতির প্রশ্নে আমরাই তাদের বিরোধিতা করি এবং জনগণের পক্ষে কথা বলি।'
সিপিবির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, 'ক্ষমতায় গেলে মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও সব মানুষের ভোটাধিকার গণতন্ত্র কাজ শিক্ষা চিকিৎসার অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে কমিউনিস্ট পার্টি। এ পর্যন্ত যারা পালাক্রমে শাসন ক্ষমতায় ছিল এবং আছে তারা মেহনতি মানুষকে অমর্যাদায় রেখেছে। সমভোটের অধিকারের কথা থাকলেও ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'সরকার পাচারের টাকা উদ্ধার, খেলাপি ঋণ আদায় ও দুর্নীতি লুটপাট বন্ধে কোনো উদ্যোগ নেয় না। রাস্তাঘাট-হাটবাজারে ইজারা, ভূমি অফিসের দুর্নীতি, চাঁদাবাজি দৈনন্দিন ঘটনায় পরিণত হয়েছে।'
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, 'ক্ষমতাসীনরা দেশটাকে আজ এমন জায়গায় নিয়ে গেছে, তরুণ প্রজন্ম দেশকে ঘিরে স্বপ্ন দেখছে না। তথ্যই বলছে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রাপ্ত তরুণ কাজ না করে অনির্দিষ্ট ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছে। দেশ ছেড়ে অন্য দেশে যাওয়ার চিন্তায় বিভোর তারা। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে এটি কাম্য হতে পারে না।'
তিনি সরকারের ধাপে ধাপে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির তীব্র সমালোচনা করে বলেন, 'কিছু ব্যবসায়ী ও কমিশনভোগীদের সুযোগ দিতেই বাংলাদেশের নিজস্ব সম্পদ গ্যাস, নবায়নযোগ্য জ্বালানি থাকার পরও জ্বালানি খাতকে জাতীয় অর্থনীতি ও সাধারণ মানুষের গলার কাটায় পরিণত করা হয়েছে। সরকারের এই ভুলনীতি ও দুর্নীতির দায় জনগণের কাঁধে চাপিয়ে দাম বাড়ানো হচ্ছে।'
তিনি গণতন্ত্র-ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'বিনা ভোটে নির্বাচিতরা কখনোই জনগণের স্বার্থে কাজ করবে না। তাদের জবাবদিহিতা থাকবে না। স্বচ্ছতা থাকবে না। তাই মেহনতি মানুষকে নিজেদের দাবির সঙ্গে সঙ্গে ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রের লড়াইয়ে শরিক হতে হবে।'
সমাবেশ শেষে একটি লাল পতাকা মিছিল পুরানা পল্টন, দৈনিক বাংলা, মতিঝিল, দিলকুশা, গুলিস্তান, প্রেসক্লাব হয়ে পার্টি কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।
| বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা বলেছেন, রাজনীতি যখন কেনাবেচা, ভাগবাটোয়ারা, আখের গোছানো এবং ক্ষমতা কুক্ষিগত করার হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে, তখন নীতির প্রশ্নে আপসহীন থেকে শ্রমিক-কৃষক, মেহনতি মানুষের পার্টি সিপিবি মানুষ ও প্রকৃতির মুক্তির লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। |
মেজর (অব.) হাফিজ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার: মঈন খান | বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন বীর বিক্রম রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
আজ বুধবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তার পরিবারকে সমবেদনা জানাতে গিয়ে মঈন খান এ কথা বলেন।
মঈন খান বলেন, 'এটা কারও অজানা নয় যে, আমাদের বীর বিক্রম মেজর হাফিজ মিথ্যা প্রলোভনে নতিস্বীকার করেননি। সরকারের বিভিন্ন রকম চাপ; পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তাকে সরকারি দলে যোগ দেওয়ার একটা ছলনা সৃষ্টি করা, সেই ছলনায় তিনি অংশগ্রহণ করেননি। অনেকে বলেন, সেই আক্রোশও মেজর হাফিজের ওপর রয়েছে এই সরকারের। তারই হয়তো বহিঃপ্রকাশ গতকাল ঘটে থাকতে পারে।'
তিনি বলেন, 'আজকে এসব আর গোপনীয় বিষয় নয়। বাংলাদেশের মানুষ সব কিছু জানে, সব কিছু বোঝে। আজকে সরকার যে কাজগুলো করছে এবং গতকাল বীর বিক্রম মেজর হাফিজকে তারা কারারুদ্ধ করেছে এর চেয়ে নিন্দাজনক, লজ্জাজনক বিষয় তো আর কিছু হতে পারে না।'
বাংলাদেশে রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ ব্যবস্থা, প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বিচার ব্যবস্থা, সংসদ, নির্বাচন কমিশন সব কিছু প্রতিহিংসার রাজনীতির কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।
মঈন খান বলেন, 'একদলীয় সরকার আজকে এখানে আছে এটা তো আমাদের কথা না, সারা বিশ্বের মিডিয়া এই কথা বলছে। পশ্চিমা বিশ্বের গণতন্ত্রকামী রাষ্ট্রগুলো; যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, এমনকি জাতিসংঘ পর্যন্ত বলেছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই, বাংলাদেশে মানবাধিকার নেই, বাংলাদেশের মানুষের ভোটের নেই, আর কী বলবে!'
তিনি বলেন, 'বিএনপি তো তাদের কথা বলতে শিখিয়ে দেয়নি! আর যদি বিএনপির কথায় তারা প্রতিধ্বনি করে থাকে, তাহলে তো বুঝতে হবে যে বিএনপি সত্য কথা বলে, পৃথিবীর সবাই বিএনপির কথায় ওঠে-বসে।
'বাস্তবতা হচ্ছে, এই সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য কোথায় নামতে পারে তার প্রমাণ গতকাল হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে একজন বীর সেনানী বীর বিক্রম মেজর হাফিজকে তারা মিথ্যা একটি মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করেছে। আমরা এর পেছনে পর্দার অন্তরালে অনেক কথা শুনেছিলাম, ৭ জানুয়ারির আগে, সরকার বিএনপি দলটিকে ভেঙে চুরমার করে দিয়ে বিভিন্ন সদস্যদের লোভ-লালসা দেখিয়ে নিজেদের দলে যোগদানে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করছে,' বলেন তিনি।
| বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন বীর বিক্রম রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। |
এই দেশে একজনের দোষ আরেক জনের ওপর চাপানোর প্রবণতা আছে: প্রধানমন্ত্রী | এই দেশে কোনো একটা ঘটনা ঘটানোর পর একজনের দোষ আরেক জনের ওপর চাপানোর প্রবণতা আছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আধুনিক প্রযুক্তির ফলে প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করা সহজ হয়েছে।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার সকালে কুর্মিটোলা র্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের কিছু প্রাকৃতিক দুর্যোগ আছে, কিছু মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগও আছে। সব থেকে দুঃখের বিষয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমাদের দেশে আমরা দেখি, আমাদের বিরোধী দল নামে সংগঠন, তারাও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। আমরা দেখেছি ২০১৩ সালে তাদের ভূমিকা, কীভাবে অগ্নি সন্ত্রাস করে মানুষকে হত্যা করেছে। ট্রাকে ছেলেকে বসিয়ে রেখে বাবা বাইরে গেছে, এসে দেখে ট্রাকসহ ছেলে পুড়ে অঙ্গার হয়ে আছে। চলন্ত বাসে আগুন দেওয়া, পরিবারসহ সেখানে নিহত হয়েছে। পুলিশকে রাস্তায় ফেলে পিটিয়ে হত্যা করা, গাড়িতে আগুন দেওয়া, পুলিশ হাসপাতালে আক্রমণ করা, অ্যাম্বুলেন্সে রোগী যাচ্ছে সেখানে বাধা দেওয়া, চিফ জাস্টিসের বাড়িতে আক্রমণ, জাজেস কোয়ার্টারে আক্রমণ; এই ধরনের নানা ঘটনা—ট্রেনে আগুন, যেখানে মা আর শিশু সন্তান পুড়ে মারা যায়। এই ধরনের বীভৎস ঘটনা আমরা ঘটাতে দেখেছি। বেশি দিন আগের কথা না, ২০২৩ সালে।'
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'এই ধরনের ঘটনাগুলো মোকাবিলা করা এবং আসামি, যারা ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে সেগুলোকে গ্রেপ্তার করা, এ ক্ষেত্রে আমি দেখেছি, র্যাব সিসিটিভি ফুটেজ, তার থেকে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাও যথেষ্ট সক্রিয় ছিল। যার মাধ্যমে এই সমস্ত ফুটেজগুলো জনসম্মুখে চলে এসেছে। নইলে এই দেশে কোনো একটা ঘটনা ঘটানোর পর একজনের দোষ আরেক জনের ওপর চাপানোর একটা প্রবণতা আছে।
'২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা যখন আমাদের ওপর করা হলো, তখন আমি বিরোধী দলের নেতা। তখন দেখা গেল, বাংলাদেশের যিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তিনি আমার ওপরই দোষ দিচ্ছেন যে, আমি নাকি ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে নিজেই নিজেকে মেরেছি। মনে হয় যেন আমি আত্মহত্যা করতে গেছি। এই ধরনের কথা রটিয়ে দেওয়া হয়েছি। ঠিক এইভাবে ২৮ অক্টোবর যখন আক্রমণ করা হয় এবং এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো হয়, জ্বালাও-পোড়াও করা হয়, এই ঘটনাগুলো তারা অন্যের ওপর চাপাতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এখন আধুনিক প্রযুক্তি আছে, সিসিটিভি ফুটেজ থেকে সত্যিকার তথ্যগুলো বের হয় এবং যথাযথ লোকগুলোকে শনাক্ত করতে খুব সুবিধা হয়েছে। যার ফলে সঙ্গে সঙ্গে এই সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনা সহজ হয়ে গেছে,' বলেন তিনি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমরা নির্বাচন করেছি। এই নির্বাচন নিয়ে অনেক কথা ছিল। এর পূর্বে আমি জানি কোনো একটা সময়ে একটি বড় দেশ আমাদের ওপর হঠাৎ স্যাংশন দিলো, বিশেষ করে র্যাবের ডিজিসহ সেই সময় র্যাবে কর্মরত অনেকের ওপর স্যাংশন দেওয়া হলো। সেখানে আমার প্রশ্ন ছিল, যারা আমাদের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, জলদস্যু, বনদস্যু, এদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা বা মানুষের অধিকার সংরক্ষণে যারা কাজ করেছে, তাদের ওপর কীভাবে স্যাংশন আসে? তাদের অপরাধটা কী আর কেউ যদি অপরাধ করে, তাহলে কেউ তো আইনের ঊর্ধ্বে নয়! সে যে কোনো সংস্থার লোকই হোক, তাকে তো আমরা আইনের আওতায় আনি এবং আমরা তার বিচারও করেছি। বিচার হচ্ছে, হবে এটা স্বাভাবিক। ভবিষ্যতেও হবে। যার যার কর্তব্য পালন যথাযথভাবে করছে কি না সেটা দেখার কথা। কিন্তু আমাদের সংস্থা দেশের মানুষের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য যখন কোনো অপরাধী শনাক্ত করবে, ধরবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সে জন্য আরেকটি দেশ এসে স্যাংশন দেবে এটা আমাদের কাছে কখনো গ্রহণযোগ্য নয়।'
পঁচাত্তর সালের ১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে যতগুলো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, আমি অন্তত এটুকু বলতে পারি, এবারের নির্বাচন সব থেকে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে জনগণ ভোট দিতে পেরেছে উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, 'আমি জানি যে, বাংলাদেশের এই নির্বাচনে হয়তো সকলে খুশি হতে পারেনি। খুশি কারা হতে পারেনি? যারা চায়নি কোনো নির্বাচন হোক, যারা চায়নি এখানে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকুক। তারা হয়তো অখুশি। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ এবং আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ-সংস্থা, তারা সকলেই আনন্দিত। বেশিরভাগ, সকলের কাছ থেকে একটা অভিনন্দনপত্র আমরা পেয়েছি এই নির্বাচনটা সুষ্ঠুভাবে হওয়ার জন্য ও আবার সরকার গঠন করার জন্য।'
| এই দেশে কোনো একটা ঘটনা ঘটানোর পর একজনের দোষ আরেক জনের ওপর চাপানোর প্রবণতা আছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আধুনিক প্রযুক্তির ফলে প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করা সহজ হয়েছে। |
অসাধু ব্যবসায়ী-জাল মুদ্রার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখতে বললেন প্রধানমন্ত্রী | কিশোর গ্যাং, মাদক, অসাধু ব্যবসায়ী ও জাল মুদ্রার বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার সকালে কুর্মিটোলা র্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসে আমরা জিরো টলারেন্স। আমি ধন্যবাদ জানাই র্যাবের সকল সদস্যকে; জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহসী ভূমিকা রেখেছেন। জঙ্গিবাদ দমনে বিশেষ ভূমিকা তারা রেখেছেন।'
তিনি বলেন, 'আমরা বলতে পারি, এই দেশে জঙ্গিবাদের একটি মাত্র ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তা আমরা মোকাবিলা করেছিলাম—সেটা হলি আর্টিজানের ঘটনা। তারপর থেকে আমাদের এই দেশে কিন্তু সেই ধরনের বড় ঘটনা ঘটতে পারেনি, কারণ আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এবং প্রতিটি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা অত্যন্ত সক্রিয়। বিশেষ করে র্যাবের জঙ্গিবিরোধী ভূমিকার জন্য আমি প্রশংসা করি।'
শেখ হাসিনা বলেন, 'আমাদের অনেক সমস্যা ছিল। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, অবৈধ অস্ত্র, মাদক, বিভিন্ন চরমপন্থা, জলদস্যু, বনদস্যু, একে একে প্রতিটি ক্ষেত্রে কিছু জায়গায় অ্যাকশন নিয়ে, কিছু জায়গায় সমঝোতা দিয়ে, কিছু জায়গায় বুঝিয়ে-সুঝিয়ে—প্রতিটি ক্ষেত্রেই কিন্তু সাফল্য আমরা অর্জন করেছি। আজ সুন্দরবন বনদস্যু মুক্ত হয়েছে। যারা সারেন্ডার করেছে, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।'
অপরাধীদের পুনর্বাসনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, 'তাদের পুনর্বাসন করে দিয়ে তাদের জীবন-জীবিকাকে আরও সুন্দর করে দেওয়া, সেই ব্যবস্থাটাই আমরা নিয়েছি যেন আবার তারা বিপথে না যায়। প্রতিনিয়ত তাদের খোঁজ আমরা রেখে যাচ্ছি।'
এ সময় কিশোর গ্যাং, মাদক, নারীর ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আরেকটি বিষয়ে নজর দিতে হবে—এখন রোজা সামনে, এই রমজান মাসে; এটা খুব দুর্ভাগ্যের বিষয়, রমজান বলা হয়েছে সংযমের মাস। সংযমতাকে সেখানে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা দেখি, আমাদের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছে, তারা যেন সংযমতার পরিবর্তে আরও লোভী হয়ে পড়ে। যে পণ্যগুলো আমাদের প্রয়োজন, সেগুলো মজুত করে রাখা, সেগুলোর দাম বৃদ্ধি করা, নানা রকমের কারসাজি করে থাকে।
'এই অসাধু ব্যবসায়ী, পাশাপাশি যারা চোরাকারবারি, তাদের বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। আর ঈদ সামনে আসলেই জাল মুদ্রার সরবরাহটা বেড়ে যায়। সেসব বিষয়েও নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। যদিও এর ওপর অভিযান চলছে, অভিযানটা আপনারা অব্যাহত রাখবেন সেটাই আমরা চাই,' বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, 'আমরা চাই, আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে। আমাদের দেশকে আরও উন্নত করতে হবে। আমাদের যে সমস্ত সম্পদ, সেগুলো সংরক্ষণ করতে হবে। সেগুলো সংরক্ষণ করেই আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।'
বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আত্মনির্ভরশীল হওয়ার চেষ্টা করতে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পরে বাংলাদেশ বদলে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'আজকে যার বয়স ১৫ বা ২০ বছর বা ২৫ বছর, তারা বোধ হয় চিন্তাও করতে পারবে না ১৫ বছর আগের বাংলাদেশ কী ছিল! সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, খুন, সেশন জট, নানা ধরনের সামাজিক-অসামাজিক কাজে একটা বিশৃঙ্খল অবস্থায় ছিল। আজকের বাংলাদেশ তা নয়। আজকের বাংলাদেশ জ্ঞান, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি সর্বক্ষেত্রে অগ্রগামী।'
| কিশোর গ্যাং, মাদক, অসাধু ব্যবসায়ী ও জাল মুদ্রার বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। |
বাংলাদেশ ডামি সোনার বাংলায় পরিণত: মঈন খান | বাংলাদেশ আজ ডামি সোনার বাংলায় পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে দলের মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দীন স্বপনের খোঁজ-খবর নিতে তার বাসায় গিয়ে এ কথা বলেন।
মঈন খান বলেন, 'সরকার মুখে বলে তারা নাকি স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। তারা সোনার বাংলা গড়তে চায়। আজকে বাংলাদেশের যে পরিস্থিতি, যে কাউকে জিজ্ঞাসা করুন; আজকে কোথায় সেই সোনার বাংলা? আজকে তারা ডামি নির্বাচন করেছে, বাংলাদেশ আজকে ডামি সোনার বাংলায় পরিণত হয়েছে। সত্যিকার সোনা নয়, পিতলের বাংলাদেশ।'
তিনি বলেন, 'এখানে স্বাধীনতা যুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছিল দুটি উদ্দেশ্যে, প্রথমটি হলো গণতন্ত্র। কারণ আমরা উপলব্ধি করেছিলাম, পাকিস্তানের অবকাঠামোর ভেতরে কোনো দিন গণতন্ত্র হতে পারে না। পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ, আমরা বলেছিলাম তারা স্বাধীনভাবে কথা বলতে চায়।
'কথা বলার স্বাধীনতার জন্য বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল, গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল, মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল। আজকে কোথাও সেই গণতন্ত্র? আজকে একদলীয় শাসন। এটা আমাদের কথা নয়, সবাই বলছে। টাইম ম্যাগাজিনে যে প্রতিবেদন বেরিয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে বাংলাদেশে আজকে বাকশাল টু সৃষ্টি হয়েছে,' বলেন তিনি।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গ টেনে মঈন খান বলেন, 'আমরা জানি, বাংলাদেশে কিছু সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট ধনিক শ্রেণি সৃষ্টি হয়েছে। তারা ইংল্যান্ড, আমেরিকার ধনিক শ্রেণির চেয়েও অধিকতর বিলাসবহুল জীবন যাপন করে। আপনারা দেখেছেন, লন্ডনে কীভাবে হাজার কোটি টাকার ব্যবসা বাংলাদেশের মানুষে ফেঁদে বসেছে।'
তিনি বলেন, 'সরকার যদি সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তাহলে আজকে তাদের একটি মাত্র পথ খোলা আছে; তারা এই ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন ঘোষণা করুক। প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিত্যাগ করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পথে আজকের সরকার ফিরে আসুক, এছাড়া এই সরকারের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই।'
| বাংলাদেশ আজ ডামি সোনার বাংলায় পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। |
আ. লীগ দেশকে রাশিয়া-ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে: জয়নুল আবদিন ফারুক | আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে রাশিয়া-ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তৃণমূল নাগরিক আন্দোলন এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
আওয়ামী লীগ মৃত ব্যক্তির ভোটে নির্বাচিত সরকার মন্তব্য করে ফারুক আরও বলেন, 'আজকে রাজপথে দাঁড়িয়ে রোজার আগে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য আমাদের বলতে হবে কেন? এই জন্য বলতে হবে, কারণ এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার না।'
সিন্ডিকেটের টাকা আওয়ামী লীগের দলীয় লোকজনের মাধ্যমে বণ্টন করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমার রক্তের টাকায় বিদেশে গিয়ে বাড়ি কেনা হয়। আজকে লন্ডনে কোটি কোটি পাউন্ড পাচার করা হয় একজন সাবেক মন্ত্রীর...কেন দুদক (দুর্নীতি দমন কমিশন) আজও তাকে গ্রেপ্তার করল না? তার বিরুদ্ধে সরকার আজও কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করল না?'
তিনি বলেন, 'তাই আমি বলি, এই সরকার জনগণের সরকার নয়। এই সরকার জনগণের ভোটের সরকার নয়। এই সরকার মানুষের অধিকার লুণ্ঠনের সরকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ক্ষুণ্নের সরকার, ব্যাংক ডাকাতের সরকার, শেয়ারবাজার লুটের সরকার।'
বিদেশি প্রভু বিএনপির নয়, আওয়ামী লীগের মন্তব্য করে জয়নুল বলেন, 'এক সময় স্লোগানে মুখরিত ছিল এই রাজপথ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা। যখন ছাত্রজীবন কাটিয়েছিলাম, তখন স্লোগান ছিল রুশ-ভারতের দালালরা হুঁশিয়ার। আজকে আবার চিৎকার দিয়ে বলতে হয়, এই রুশ-ভারতের আপনারা আজ্ঞাবহ। আপনারা এই দেশকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।'
| আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে রাশিয়া-ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক। |
বিজিবি জাতির আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করেছে: প্রধানমন্ত্রী | বিজিবি জাতির আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করেছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হয়েছে, যেন এ ধরনের ঘটনা কখনো না ঘটে।
এ সময় তিনি বিজিবি সদস্যদের শৃঙ্খলা ও চেইন অব কমান্ড মেনে চলার আহ্বান জানান।
আজ সোমবার সকালে পিলখানার বীর উত্তম আনোয়ার হোসেন প্যারেড গ্রাউন্ডে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধে তদানীন্তন ইপিআরের ভূমিকা উল্লেখ ও শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এখানে এলেই মনটা ভারী হয়ে যায়। ২০০৯ সাল, কেবল আমরা সরকার গঠন করেছি। ফেব্রুয়ারির ২৪ তারিখ এখানে আমি প্যারেডে আসি। আমি অফিসারদের সঙ্গে বসি, কথা বলি। অত্যন্ত মেধাবী সব অফিসাররা ছিল তখন কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় পঁচিশ তারিখ এবং ছাব্বিশ ফেব্রুয়ারি; পঁচিশ তারিখ ঘটে এক অঘটন। সেই বিদ্রোহের ফলে এই বাহিনীর ৫৭ জন, সেনা কর্মকর্তাসহ আরও সাধারণ মানুষ, সব মিলিয়ে ৭৪ জন জীবন হারায়।'
তিনি বলেন, 'এই বাহিনীর তৎকালীন মহাপরিচালকসহ যে সকল সদস্যরা নিহত হয়েছে, আমি তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। তাদের পরিবারের প্রতি আমার সহমর্মিতা জানাই। স্বজনহারা বেদনা যে কী কঠিন, সেটা বোধ হয় আমার থেকে আর কেউ বেশি উপলব্ধি করতে পারে না।
'তবে যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। কারণ এ ধরনের ঘটনা যেন আর কখনো না ঘটে,' বলেন তিনি।
আমাদের দেশ মাতৃকা রক্ষায় সদা জাগ্রত অতন্দ্র প্রহরী বিজিবি দেশের অর্থনীতির জন্য কাজ করে থাকেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, 'প্রায় ১০ লাখের ওপর রোহিঙ্গা শরণার্থী আজকে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে আমাদের বিজিবিসহ সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ বা র্যাব সকলেই সেই এলাকাটা নজরদারি রাখছে। আমরা মানবিক কারণেই তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছি। তবে মিয়ানমারের সাথে আমাদের আলোচনা চলছে, যাতে আমরা এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাই এবং তাদের এই শরণার্থীদের আমরা ফেরত পাঠাতে পারি। তবে আমরা সেখানে কোনো প্রতিবেশীর সাথে ঝগড়া করতে যাইনি, তাদের সাথে আলোচনার মাধ্যমেই আমরা এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছি।'
তিনি আরও বলেন, 'সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী, পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরে যখনই কোনো সমস্যা হয়, সেই অগ্নি সন্ত্রাস থেকে শুরু করে নানা ধরনের ঘটনা ঘটেছে তখনো বিজিবি সদস্যরা সাধারণ মানুষের পাশে আছেন এবং তাদের জানমাল রক্ষায় ভূমিকা রাখেন। জাতির একটা আস্থা-বিশ্বাস আপনারা অর্জন করেছেন।
'আমরা ইতোমধ্যে এই বিজিবিকে আরও শক্তিশালী করার জন্য বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন, ২০১০ পাস করেছি। সেই সাথে সাথে একটি দক্ষ, শক্তিশালী ও আধুনিক ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে বিজিবি আজ গড়ে উঠেছে। জল, স্থল, আকাশ পথেও দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হয়েছে,' যোগ করেন তিনি।
এ সময় তিনি বিজিবির উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।
| বিজিবি জাতির আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করেছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হয়েছে, যেন এ ধরনের ঘটনা কখনো না ঘটে। |
বিদ্যুৎ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য সাংঘর্ষিক: রিজভী | দেশের বিদ্যুৎ খাত গভীর সংকটে নিমজ্জিত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রবিবার (৩ মার্চ) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় তিনি বলেন, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
বিএনপি নেতা বলেন, কাদের দাবি করেছেন দেশে শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছেন অথচ তার প্রধানমন্ত্রী কিছুদিন আগে বলেছিলেন, দেশে স্বল্প পরিসরে হলেও লোডশেডিং থাকবে।
তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষ সকাল-সন্ধ্যা লোডশেডিংয়ে ভুগছে অথচ তাপমাত্রা এখনো সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।
বিএনপি দেশের মানুষকে উপেক্ষা করে বিদেশি প্রভুর কাছে ধরনা দিচ্ছে- কাদেরের এই বক্তব্যের নিন্দা করেন রিজভী।
তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সম্ভবত স্মৃতিশক্তি লোপ পেয়েছে। কারণ তিনি ২০১৪ সালের নির্বাচন ভুলে গিয়েছিলেন যখন ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুজাতা সিং আওয়ামী লীগকে তাদের সমর্থন করতে এবং এইচএম এরশাদকে নির্বাচনে যোগদান করানোর জন্য বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।
এটি একটি সার্বভৌম দেশে হস্তক্ষেপের স্পষ্ট লক্ষণ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, জয়নাল আবেদীন (ভিপি জয়নাল), সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন, সহ অর্থনৈতিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন প্রমুখ।
| দেশের বিদ্যুৎ খাত গভীর সংকটে নিমজ্জিত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। |
কিশোর গ্যাং বন্ধে গোড়া থেকে ধরতে হবে: প্রধানমন্ত্রী | কিশোর গ্যাং বন্ধে জেলা প্রশাসক ও কমিশনারদের কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত জেলা প্রশাসক সম্মেলনে-২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই আহ্বান জানান।
কিশোর গ্যাং প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'যখন ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যাবে, পড়াশোনা করবে, সেই সময় কিশোর গ্যাং; বিশেষ করে কোভিড অতিমারির সময় কিন্তু এই জিনিসটা সব থেকে বেশি সামনে এসেছে। আমার মনে হয়, প্রত্যেকটা এলাকাভিত্তিক ছেলে-মেয়ে যারা শিক্ষাগ্রহণ করবে, তারা কেন এ ধরনের গ্যাং হবে এবং অসামাজিক কাজে বা ছিনতাই, খুন, ডাকাতি, এসবে লিপ্ত হবে। সে বিষয়টা নজরদারি করা একান্তভাবে জরুরি।
আরওরমজানে মজুতদারির বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
'আমি মনে করি, আমাদের কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকরা একেবারে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত যত স্কুল, কলেজসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে সেখানে ছেলে-মেয়েরা যায় কি না, অভিভাবকদের নজর দেওয়া তারা কী কী কাজ করছে। কেউ জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক অথবা এই কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে যুক্ত হচ্ছে কি না, সেদিকে একটু নজরদারি বাড়াতে হবে। আমার মনে হয়, পরিবারকে একটু সচেতন করতে পারলে এই জিনিসগুলো...শুধু গ্রেপ্তার করে, ধরে লাভ নেই। কারণ গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠালে আবার এর থেকে আরও বেশি; যেগুলো গ্যাং থাকে বা যারা বেশি আইন-শৃঙ্খলার ভঙ্গ করল অথবা খুন করে বা কোনো অপরাধ করে অপরাধী, তাদের সঙ্গে মিশে এরা আরও বেশি খারাপ হয়ে যাবে,' যোগ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, 'সেই কারণে গোড়া থেকে আমাদের ধরতে হবে। পরিবার থেকে শুরু করতে হবে বা স্কুল-কলেজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেই শুরু করতে হবে। ছেলে-মেয়েরা যেন এই ধরনের পথে কখনো না যেতে পারে।'
এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রামে যেন শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি থাকে সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
অন্য কোনো দেশের সাহায্য ছাড়া পার্বত্য শান্তি চুক্তি করা হয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'তারা আমার দেশের নাগরিক। আমি ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর থেকে এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন ছিলাম। আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমরা একটা বিশেষ কমিটি করে দিয়েছিলাম। যার মাধ্যমে ওই অঞ্চলের কী সমস্যা, কেন এই অবস্থার সৃষ্টি হলো; এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল ১৯৭৬ সালের পর থেকে। সেগুলো জেনে আমরা দীর্ঘ দিন কাজ করেছি। যারা বিক্ষুব্ধ ছিল, তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা ১৯৯৬ সালে সরকারে এসেছি, তখন আমরা পার্লামেন্ট কমিটি করেছি। পাশাপাশি আমি নিজে এর সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রেখে আমরা একটা শান্তি চুক্তি করতে সক্ষম হয়েছি।'
তিনি বলেন, 'সেখানে যারা অস্ত্রধারী ছিল, এক হাজার ৮০০ অস্ত্রধারী আমার হাতে, প্রকাশ্যে অস্ত্র জমা দিয়েছিল। পৃথিবীর বহু দেশে বহু শান্তি চুক্তি হয়েছে কিন্তু আমাদেরটা ছিল অনন্য ঘটনা। কারণ এ ধরনের ঘটনা খুব কমই ঘটে। পার্বত্য চট্টগ্রামে এখন ব্যাপক উন্নয়নের কাজ চলছে। আর্থ-সামাজিক, অবকাঠামোগত উন্নয়ন আমরা করে যাচ্ছি এবং আমাদের বর্ডার লাইনগুলোতে আগে বর্ডার পোস্ট ছিল না, আমরা নতুন করে বর্ডার পোস্ট তৈরি করা শুরু করে দিয়েছি।
'পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনো কিছু কিছু দুর্ঘটনা ঘটে, এই বিষয়ের দিকেও সবাইকে একটু নজর দিতে হবে, সেখানে কোনো রকম যেন অশান্ত পরিবেশ আবার ফিরে না আসে। সেখানে শান্তি-সৌহার্দপূর্ণ পরিস্থিতি যেন বিরাজমান হয়,' যোগ করেন তিনি।
খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী সমন্বিত কৃষির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগ তুলে ধরেন।
এছাড়া, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্ব দেন শেখ হাসিনা।
আরওডিসি সম্মেলন শুরু কাল, মেলেনি তিন প্রশ্নের উত্তর
'আমি মনে করি, আমাদের কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকরা একেবারে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত যত স্কুল, কলেজসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে সেখানে ছেলে-মেয়েরা যায় কি না, অভিভাবকদের নজর দেওয়া তারা কী কী কাজ করছে। কেউ জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক অথবা এই কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে যুক্ত হচ্ছে কি না, সেদিকে একটু নজরদারি বাড়াতে হবে। আমার মনে হয়, পরিবারকে একটু সচেতন করতে পারলে এই জিনিসগুলো...শুধু গ্রেপ্তার করে, ধরে লাভ নেই। কারণ গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠালে আবার এর থেকে আরও বেশি; যেগুলো গ্যাং থাকে বা যারা বেশি আইন-শৃঙ্খলার ভঙ্গ করল অথবা খুন করে বা কোনো অপরাধ করে অপরাধী, তাদের সঙ্গে মিশে এরা আরও বেশি খারাপ হয়ে যাবে,' যোগ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, 'সেই কারণে গোড়া থেকে আমাদের ধরতে হবে। পরিবার থেকে শুরু করতে হবে বা স্কুল-কলেজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেই শুরু করতে হবে। ছেলে-মেয়েরা যেন এই ধরনের পথে কখনো না যেতে পারে।'
এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রামে যেন শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি থাকে সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
অন্য কোনো দেশের সাহায্য ছাড়া পার্বত্য শান্তি চুক্তি করা হয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'তারা আমার দেশের নাগরিক। আমি ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর থেকে এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন ছিলাম। আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমরা একটা বিশেষ কমিটি করে দিয়েছিলাম। যার মাধ্যমে ওই অঞ্চলের কী সমস্যা, কেন এই অবস্থার সৃষ্টি হলো; এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল ১৯৭৬ সালের পর থেকে। সেগুলো জেনে আমরা দীর্ঘ দিন কাজ করেছি। যারা বিক্ষুব্ধ ছিল, তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা ১৯৯৬ সালে সরকারে এসেছি, তখন আমরা পার্লামেন্ট কমিটি করেছি। পাশাপাশি আমি নিজে এর সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রেখে আমরা একটা শান্তি চুক্তি করতে সক্ষম হয়েছি।'
তিনি বলেন, 'সেখানে যারা অস্ত্রধারী ছিল, এক হাজার ৮০০ অস্ত্রধারী আমার হাতে, প্রকাশ্যে অস্ত্র জমা দিয়েছিল। পৃথিবীর বহু দেশে বহু শান্তি চুক্তি হয়েছে কিন্তু আমাদেরটা ছিল অনন্য ঘটনা। কারণ এ ধরনের ঘটনা খুব কমই ঘটে। পার্বত্য চট্টগ্রামে এখন ব্যাপক উন্নয়নের কাজ চলছে। আর্থ-সামাজিক, অবকাঠামোগত উন্নয়ন আমরা করে যাচ্ছি এবং আমাদের বর্ডার লাইনগুলোতে আগে বর্ডার পোস্ট ছিল না, আমরা নতুন করে বর্ডার পোস্ট তৈরি করা শুরু করে দিয়েছি।
'পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনো কিছু কিছু দুর্ঘটনা ঘটে, এই বিষয়ের দিকেও সবাইকে একটু নজর দিতে হবে, সেখানে কোনো রকম যেন অশান্ত পরিবেশ আবার ফিরে না আসে। সেখানে শান্তি-সৌহার্দপূর্ণ পরিস্থিতি যেন বিরাজমান হয়,' যোগ করেন তিনি।
খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী সমন্বিত কৃষির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগ তুলে ধরেন।
এছাড়া, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্ব দেন শেখ হাসিনা।
আরওডিসি সম্মেলন শুরু কাল, মেলেনি তিন প্রশ্নের উত্তর
| কিশোর গ্যাং বন্ধে জেলা প্রশাসক ও কমিশনারদের কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। |
রমজানে মজুতদারির বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর | আসন্ন রমজান মাসে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ অব্যাহত রাখতে মজুতদারির বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত জেলা প্রশাসক সম্মেলনে-২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই আহ্বান জানান।
এই প্রথম আইনের মাধ্যমে গঠিত নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনা করেছে এবং কমিশনের নির্দেশনা অনুসরণ করে জেলা প্রশাসকরা সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, '১৯৭৫ সালের পর থেকে যতগুলো নির্বাচন আমি দেখেছি, প্রত্যক্ষভাবে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে দেখেছি; কীভাবে জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। এবারের নির্বাচন আমি মনে করি যে, সব থেকে সুষ্ঠু একটি নির্বাচন, অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'প্রকৃতপক্ষে যারা নির্বাচনই চায়নি, যাদের লক্ষ্য ছিল এ দেশে যেন কোনো নির্বাচনই না হয়—অনির্বাচিত; অস্বাভাবিক পরিস্থিতি আবার সৃষ্টি হয়, পঁচাত্তর সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে ২১ বছর এ দেশের মানুষ কষ্ট ভোগ করেছে, এরপর আবার ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত, সেই পরিস্থিতি যেন আসে। তাদের কাছে হয়তো নির্বাচনটা পছন্দ নাও হতে পারে। কারণ তাদের মন মতো কাজ হয়নি। কিন্তু সাধারণ মানুষ, একদম গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত মহিলা এবং প্রথমবার যারা ভোটার; তরুণ ভোটাররা, তাদের আগ্রহ সব থেকে বেশি ছিল। তারা যে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পেরেছে, এটার সমস্ত কৃতিত্ব আপনাদেরই—আমি মনে করি, যারা নির্বাচনী কাজে সাহায্যে ছিলেন।'
এ সময় জেলা প্রশাসকদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, 'রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ, কোভিড-১৯ এর অতিমারি, যার প্রভাব সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে পড়েছে। পৃথিবীতে এখন এমন এমন দেশ আছে যেখানে মূল্যস্ফীতি ৪০ ভাগও আছে। এ রকম বহু দেশ এখন বিরাজ মান। বাংলাদেশও এর থেকে দূরে না। যদিও বাংলাদেশর মূল্যস্ফীতি এখনো ১০ ভাগের নিচেই আছে। তারপরও এটা একটা সমস্যা রয়ে গেছে। সেদিকে আমাদের সব থেকে বেশি লক্ষ রাখতে হবে যে, আমাদের বাজার পরিস্থিতি কেমন, আর তাছাড়া সামনে রোজা আসবে।
'রমজান মাসে আমাদের কিছু কিছু মানুষ থাকে সব সময় মজুতদারি করে দাম বাড়িয়ে কিছু মুনাফা লুটতে চায়। সেদিকে বিশেষভাবে নজর আমাদের দিতে হবে। আশু করণীয় একটা কাজ আমাদের সামনে। কোথাও যেন ভোক্তাদের হয়রানি হতে না হয়। সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। আমাদের দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে। পর নির্ভরশীলতা আমাদের কমাতে হবে। এটা যে আমরা করতে পারি, সেটা আমরা অনেক ক্ষেত্রে প্রমাণ করেছি। সেদিকে নজর একান্তভাবে দরকার,' যোগ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি আরও বলেন, 'সরবরাহের ক্ষেত্রেও নানা সমস্যার সৃষ্টি হয় অথবা একটা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়। কেউ কেউ মজুতদারি করে পচিয়ে ফেলবে কিন্তু বাজারে দেবে না—এই জাতীয় অবস্থার সৃষ্টি করে। সেই দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি এবং কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।
'রমজান মাস সামনে রেখেই এই কথাগুলো আমি সবাইকে বললাম। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেন সাধারণ মানুষের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছাতে পারে সেদিকে সবাইকে যথাযথভাবে নজর দিতে হবে,' যোগ করেন তিনি।
| আসন্ন রমজান মাসে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ অব্যাহত রাখতে মজুতদারির বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। |
জ্বালানি ও বিদ্যুৎখাত জনগণের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে: সিপিবি | বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, বিদ্যুৎ নিয়ে সরকারের গালগল্প এমনই জায়গায় পৌঁছেছে যে আজ বলা হচ্ছে, নিয়মিত লোডশেডিংয়ের জন্য প্রস্তুত থাকুন।
আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকার পুরানা পল্টন মোড়ে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোট আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, 'সরকারের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ নিয়ে নীতি, যাকে আমরা ভুলনীতি বলে অভিহিত করি। এই ভুলনীতি ও দুর্নীতির কারণে আজ জ্বালানি ও বিদ্যুৎখাত অর্থনীতিতে ও জনগণের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। এই কাঁটা উপড়ে ফেলার পরিবর্তে জনগণকেই কাঁটায় বিদ্ধ করার নীতি নিয়েছে সরকার। তাই তো প্রকৃত আয় কমে যাওয়া সাধারণ মানুষের কাঁধে আবারও এই মূল্যবৃদ্ধির বোঝা চাপানো হচ্ছে।'
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, 'আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছিলাম যে প্রধানত গ্যাস ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর নির্ভর করেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে। সরকার সে পথে না হেঁটে কিছু ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও কমিশনভোগীদের সুবিধা দেওয়ার জন্য আমদানি নির্ভর জ্বালানি দিয়েই বিদ্যুৎ উৎপাদনের নীতি গ্রহণ করেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেও কেন্দ্র বসিয়ে রেখে হাজার হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জের নামে এদের দেওয়া হয়েছে ও হচ্ছে।'
তিনি অবিলম্বে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও বিদ্যুতের ভুলনীতি ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানান।
সমাবেশে নেতারা আগামী ৩ মার্চ থেকে সপ্তাহব্যাপী সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচির ঘোষণা দেন। এর মধ্যে মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা হলে জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
রুহিন হোসেন প্রিন্সের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাসদের (মার্কসবাদী) নেতা ডা. জয়দীপ ভট্টাচার্য, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের নেতা শামীম ইমাম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির আব্দুল আলী ও গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির আমেনা আক্তার। সভা পরিচালনা করেন সিপিবি নেতা আনোয়ার হোসেন রেজা।
বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, 'গ্যাস ও কয়লার বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ ও ফার্নেস ওয়েলের মাধ্যমে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচের ফারাক অনেক। সরকার ফার্নেস ওয়েলে বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়িয়ে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বেশি দেখাচ্ছে। জনগণের মতামত শুনে এই খাত পরিচালিত করলে আজ দুরাবস্থায় পড়তে হতো না। এই দুরাবস্থার দায় জনগণ নেবে না।'
জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন, 'সরকার বিদেশের পাচারকৃত টাকা ফেরত আনার উদ্যোগ নেয়নি। কিছু ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়ার জন্যই অপরিকল্পিতভাবে বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করে খরচ বাড়ানো হয়েছে। আজ এই ব্যয় জনগণের কাঁধে চাপানোর প্রচেষ্টা নেওয়া হচ্ছে।'
শামীম ইমাম বলেন, 'বিনা ভোটের নির্বাচিত সরকার জনস্বার্থে ভূমিকা রাখছে না। এটা তার আরেক প্রমাণ। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি হলে সবকিছুর দাম বেড়ে যাবে। সাধারণ মানুষের জীবন আরও কষ্টকর হবে।'
আব্দুল আলী বলেন, 'সরকার গুটিকয়েক ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করছে আর সাধারণ জনগণের পেটে লাথি মারছে।'
সমাবেশে বক্তারা গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশে পুলিশি হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, জনগণের আন্দোলন দমনের এ ধরনের নিপীড়নমূলক পথ থেকে সরকার সরে না আসলে জনগণই এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
সমাবেশ থেকে জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সংগঠক মো. নাজমুল হাসানকে গতকাল গাবতলী বাসস্ট্যন্ড এলাকা থেকে অপহরণের খবরে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে তাকে উদ্ধারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের নেতা ডা. হারুন-অর-রশিদ, বাসদ মার্কসবাদীর সীমা দত্তসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল প্রেসক্লাব-তোপখানা ঘুরে পল্টন মোড়ে এসে শেষ হয়।
বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোটের উদ্যোগে আজ দেশের বিভিন্ন জেলায় সমাবেশ ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
| বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, বিদ্যুৎ নিয়ে সরকারের গালগল্প এমনই জায়গায় পৌঁছেছে যে আজ বলা হচ্ছে, নিয়মিত লোডশেডিংয়ের জন্য প্রস্তুত থাকুন। |
দেশে আইনের শাসন না থাকলে দুর্ঘটনা-বিপর্যয় ঘটতেই থাকে: ফখরুল | দেশে আইনের শাসন না থাকলে দুর্ঘটনা ও বিপর্যয় ঘটতেই থাকে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ শুক্রবার এই ঘটনায় দেওয়া বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বেইলি রোডের এই অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'এখনো হাসপাতালের বিছানায় আগুনে দগ্ধ মানুষের আহাজারি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ও মর্মস্পর্শী। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।'
'এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত ও আহতদের স্বজনদের মতো আমিও গভীরভাবে ব্যথিত ও শোকাভিভূত। আমি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট দোয়া করি—শোকার্ত পরিবারগুলো যেন তাদের স্বজন হারানোর বেদনা কাটিয়ে উঠতে ধৈর্য ধারণ করতে পারেন।'
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, 'দেশে আইনের শাসন না থাকলে দুর্ঘটনা ও বিপর্যয় ঘটতেই থাকে। কারণ সরকারকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয় না। ফলে জনসমাজে নৈরাজ্য বিরাজ করে বলেই নানা দুর্ঘটনা ঘটে ও মানুষের প্রাণ ঝরে যায়।'
বিএনপি মহাসচিব শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা ও অগ্নিদগ্ধের আহতদের সুচিকিৎসার দাবিও জানান।
| দেশে আইনের শাসন না থাকলে দুর্ঘটনা ও বিপর্যয় ঘটতেই থাকে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। |
দেশ ধ্বংসের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে তৎপর বিএনপি: ওবায়দুল কাদের | আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশ ধ্বংসের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে তৎপর বিএনপি। দেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচনের প্রতি তাদের কোনো আস্থা নেই।
আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতেই এই বিবৃতি প্রদান করা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান অসাংবিধানিক ও অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে সেনা ছাউনিতে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিল। সূচনালগ্ন থেকেই বিএনপি অত্যাচার-নির্যাতনের স্টিম রোলার চালিয়ে দেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের পথ রুদ্ধ করে রাজনীতি করে আসছে। সুতরাং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মুখে গণতন্ত্র ও সুশাসনের কথা বেমানান।'
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'সন্ত্রাসী রাজনীতির প্রতিভূ ও জঙ্গিবাদ-উগ্রবাদের পৃষ্ঠপোষক বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মুখে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলাটা ভূতের মুখে রাম নাম ছাড়া কিছু নয়।'
তিনি বলেন, একুশে আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় নির্বিচারে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের যারা হত্যা করেছিল, যাদের পৃষ্ঠপোষকতায় জঙ্গিগোষ্ঠী ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলা চালিয়েছিল, যারা দশ ট্রাক অস্ত্র আমদানি করেছিল, যারা অগ্নিসন্ত্রাস সৃষ্টি করে শত শত নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, সেই খুনিদের দল যখন জননিরাপত্তা নিয়ে কথা বলে তখন জনগণ আরও ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক নির্বিচারে কাউকে গ্রেপ্তার করে হয়রানির অভিযোগ ভিত্তিহীন মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্তর্জাতিক আদালতে স্বীকৃত সন্ত্রাসী সংগঠন বিএনপির যেসব সন্ত্রাসী ও ক্যাডাররা অগ্নিসন্ত্রাস এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও জনগণের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করাটা কোনোভাবেই হয়রানিমূলক হতে পারে না।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের আইন ও বিচারের মুখোমুখি করা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ও কর্তব্য। এ কথা আজ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ও প্রমাণিত যে সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বে বাংলাদেশ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের জনগণ যেকোনো সময়ের তুলনায় স্বস্তিতে বসবাস করছে। যেকোনো মূল্যে দেশের জনগণের শান্তি, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির জন্য আমরা কাজ করে যাবো।
| আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশ ধ্বংসের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে তৎপর বিএনপি। দেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচনের প্রতি তাদের কোনো আস্থা নেই। |
আজকে মানুষ বাজার করতে না পেরে ঘরে ফিরে যায়: মঈন খান | দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, আজকে মানুষ বাজার করতে না পেরে ঘরে ফিরে যায়।
জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
মঈন খান বলেন, 'শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ঐক্যের রাজনীতি করেছেন। বিভাজনের রাজনীতি করেন নাই, যেটা আজকে আওয়ামী লীগ করছে।'
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে বিভাজনের কোনো স্থান নেই। সরকার ঔপনিবেশিক ধ্যান-ধারণা নিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি-বিপক্ষের শক্তি বলে বিভেদ সৃষ্টি করে এই দেশকে শাসন করে যেতে চায়। তারা নিজেদের ক্ষমতার লোভে এই জাতিকে বিভাজনের মাধ্যমে ধ্বংস করে দিচ্ছে।'
বাংলাদেশে কোন জিনিসের দাম আজকে বাড়েনি? সব জিনিসের দাম আকাশচুম্বী, মানুষের জীবন ত্রাহি ত্রাহি। আজকে মানুষ বাজারে গিয়ে বাজার করতে না পেরে ঘরে ফিরে যায়।'
রাজধানীর মোড়ে মোড়ে বুভুক্ষু মানুষের হাহাকার, গাড়ির পাশে এসে দাঁড়ায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'সরকার এগুলো দেখতে পায় না। কারণ সরকার দেখতে পায় কানাডার বেগম পল্লী, মধ্যপ্রাচ্যের গুলশান থ্রি, মালয়েশিয়ার সেকেন্ড হোম।'
তিনি বলেন, 'আজকে আমাদের এই প্রত্যাশা, সরকার ক্ষমতার মোহ থেকে বেরিয়ে আসুক, তারা জনগণের রাজনীতি করুক—যে উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল। আমরা পাকিস্তানের ২২টি ধনী পরিবারের জন্য বাংলাদেশ সৃষ্টি করি নাই। এই সরকার আজকে তার পরিবর্তে, বাংলাদেশে ২২০টি পরিবার সৃষ্টি করে গণতন্ত্রের পরিবর্তে একটি অলিগার সৃষ্টি করেছে। যেখানে তারা কিছু মুষ্টিমেয় লোক বাংলাদেশের সব সম্পদ কুক্ষিগত করে ফেলেছে। লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এই অবস্থা থেকে আমরা মুক্তি চাই।'
| দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, আজকে মানুষ বাজার করতে না পেরে ঘরে ফিরে যায়। |
দেউলিয়া হয়ে সরকার জনগণের পকেট নিংড়ানোর নীতি নিয়েছে: বামজোট | বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী শুক্রবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া সারাদেশে বিক্ষোভ সংঘটিত হবে বলে বামজোট জানিয়েছে।
আজ বুধবার এক যৌথ বিবৃতিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবীর জাহিদ, বাসদের (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী এ বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি এবং পর্যায়ক্রমে আরও মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্তের খবরে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, সরকার আর্থিকভাবে দেউলিয়া হয়ে সাধারণ জনগণের পকেট নিংড়ানোর নীতি গ্রহণ করেছে। আইএমএফের শর্ত মানাসহ অপ্রয়োজনীয় খাতে অর্থ যোগান দিতে জনগণের কাছ থেকে আইন করে টাকা তোলার নীতি নিয়ে চলছে সরকার।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার সব ধরনের যুক্তি, দেশের সাধারণ মানুষের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি উপেক্ষা করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। এটাও জানিয়েছে মূল্য সমন্বয়ের নামে এই মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। এর অর্থ, পহেলা মার্চ থেকে যতটুকু বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হলো, প্রকৃতপক্ষে মূল্যবৃদ্ধি তার থেকে অনেক গুণ বেশি হতেই থাকবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিদ্যুতের দাম বাড়লে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিসহ সর্বত্র মূল্যবৃদ্ধি ঘটবে। আর জিনিসপত্রের বর্ধিত দাম সাধারণ জনগণকেই দিতে হবে। সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি বরং প্রকৃত আয় কমে গেছে। এর মধ্যে এই মূল্য বৃদ্ধি সহ্য করার ক্ষমতা সাধারণ মানুষের নেই।
এতে বলা হয়, সরকার যে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কথা বলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কথা বলছে, এটা কোনোভাবে যৌক্তিক নয়। সরকার যে নীতিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি খাত পরিচালনা করছে, তাতে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেছে, তার দায় সাধারণ জনগণ নেবে না।
সরকার ভুলনীতি ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি না দিয়ে মূল্যবৃদ্ধি করে প্রকারান্তরে জনগণের কাঁধে শাস্তির বোঝা চাপাচ্ছে। বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় কমানোর প্রচেষ্টা সরকার কখনো নেয়নি বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
বামজোট বলছে, নানাভাবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে কিছু ব্যবসায়ী ও কমিশনভোগীদের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এটা দুই-চার কোটি টাকার সুবিধা নয়, হাজার হাজার কোটি টাকার সুবিধা, যার সবই জনগণের টাকা।
বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী শুক্রবার যার যার অবস্থান থেকে রাজপথে নেমে বিক্ষোভ সংগঠিত করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ।
| বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী শুক্রবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। |
ঋণের চাপ সহ্য করতে না পেরে মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে: রিজভী | বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ঋণের চাপ সহ্য করতে না পেরে মানুষ পরিবার নিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে।
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার বাসিন্দা সায়মা বেগমের মৃত্যুর দায় সরকার এড়াতে পারে না বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ কথা বলেন।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, 'আওয়ামী লুটেরা চক্রের কারণে ডামি সরকার সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে বাজার স্থিতিশীল রাখতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। আওয়ামী বাজার সিন্ডিকেটের পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে ডামি সরকারের ডামি মন্ত্রীরা।'
তিনি বলেন, 'ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ১ মার্চ থেকে আবারও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন। জন জীবনকে ভয়াবহ দুর্বিষহ করতেই গণবিরোধী সরকার সর্বনাশা পথে হাঁটছে। পবিত্র রমজান মাস সমাগত। সিয়াম-সাধনার এই মাসে দেশের জনগণ একটু স্বস্তি চায় কিন্তু প্রতিদিন রকেট গতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলছে।'
নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম জনগণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'রমজান উপলক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত ৮ ফেব্রুয়ারি আলাদা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে চাল, চিনি, তেল ও খেজুর আমদানিতে শুল্ক-কর কমানোর ঘোষণা দেয়। সেদ্ধ ও আতপ চালের আমদানি শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে গত ১৯ দিনে বাজারে এসব পণ্যের দর এক আনাও কমেনি। বরং খোলা খাতায় প্রতিদিন দাম বৃদ্ধির ঘটনা দেখা যাচ্ছে। দফায় দফায় বাড়ছে চিনি ও খেজুরের দাম। প্রতিবছর রমজানকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের কতিপয় চিহ্নিত অসাধু আমদানিকারক ও ব্যবসায়ী নানা ছুতায় ভোক্তার পকেট কেটে ফতুর করে দিচ্ছে।'
'মানুষ এখন সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে, যাদের সঞ্চয় নেই, তারা ঋণ করছে। ফলে মানুষের ওপর চাপ বেড়ে যাচ্ছে। অনাহার, অর্থ কষ্ট আর ঋণের চাপ সহ্য করতে না পেরে মানুষ পরিবার নিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। মুন্সীগঞ্জের ঘটনা কী মর্মান্তিক! কী বেদনাদায়ক! গতকাল মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় সায়মা বেগম (৩৫), তার মেয়ে নয় বছরের ছাইমুনা ও সাত বছরের ছেলে তাওহীদকে নিয়ে ঋণের জ্বালা সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন। এই মৃত্যুর দায় সরকার এড়াতে পারে না,' যোগ করেন তিনি।
| বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ঋণের চাপ সহ্য করতে না পেরে মানুষ পরিবার নিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। |
একটা মানুষও না খেয়ে মরেনি, অনেক ভালো আছে: কাদের | দেশের দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের মানুষ খেতে পাচ্ছে। একটা মানুষও না খেয়ে মরেনি, অনেক ভালো আছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচনের আগে বিএনপি বারবার জানাতো মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কী কথা হয়েছে। এবার সফররত প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের সঙ্গে কী আলোচনা হয়েছে তা জানানো হয়নি। এটি নতুন ষড়যন্ত্র কি না—একজন গণমাধ্যমকর্মী জানতে চাইলে কাদের বলেন, 'তারা (বিএনপি) আসলে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যা চায়, ওয়াশিংটনের কাছে যা চায়, সেই চাওয়াটা পাওয়া হয়নি। তারা শুনতে চেয়েছিল যে, সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আসবে অথবা ভিসা নীতি প্রয়োগ; এমন একটা স্বপ্ন নিয়েই তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করতে গেছে।
'তারা তাদের (বিএনপি) কথা শুনেছেন কিন্তু যেটা তারা বলে গেছেন সেটা হচ্ছে, এর সঙ্গে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছে লেখা চিঠির বক্তব্য যুক্ত করতে চাই। এই দুটি মেলালে যেটা আসে, সম্পর্কটা এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাদের অঙ্গীকার তারা ব্যক্ত করেছেন এবং শেষ কথা তারা যা বলে গেলেন, তাতে তো বিএনপির আশাবাদী হওয়ার কিছু নেই। সরকারের পতন, সরকারের ব্যর্থতা, সরকারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা—এসব বিষয়ে তারা কিছু খুঁজে পায়নি মার্কিন প্রতিনিধি দলের বক্তব্য থেকে। সে কারণে চুপ করে থাকার কৌশলটা বেছে নিয়েছে,' বলেন তিনি।
দেশের ঋণের হালনাগাদ পরিস্থিতি নিয়ে ইআরডি (অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে; গত বছরের তুলনায় এ বছর দ্বিগুণ ঋণ পরিশোধ করতে হবে। চলতি অর্থবছরে ৩০০ কোটি ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এটা নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন বা চাপে আছে কি না জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের কাদের বলেন, 'ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এটা বিশ্ব সংকটের প্রতিক্রিয়া। সারা দুনিয়াতেই এখন অর্থ সংকট প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সময় ঋণ আগের তুলনায় বাড়তে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের এ যাবত ঋণ খেলাপি হওয়ার কোনো রেকর্ড নেই। আমরা সে ব্যবস্থা করছি, আমরা ঋণ খেলাপি থাকব না। অন্তত এটুকু বলতে পারি।'
বাজারে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে যাচ্ছে, নিয়ন্ত্রণে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না—এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'রোজার মাসটা আসতে দেন!'
তিনি বলেন, 'এখন টেলিভিশন সবাই দেখে, সারা বিশ্বের সব খবর নিয়ে গ্রামের চায়ের দোকানে রীতিমত গবেষণা হয়। মানুষ বোঝে, এখানে সরকারের দোষ নেই। অর্থের যে সংকট। বিশ্বে যে সংকট দ্রব্যমূল্য নিয়ে, সেটা তো বাংলাদেশের একার না। সারা দুনিয়াতে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে।
'তবে আমাদের জনগণের ক্রয় ক্ষমতা এখনো আছে। আমরা আশা করি, সামনের রমজানেও জিনিসপত্রের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকবে এবং মানুষ পাবে,' যোগ করেন তিনি।
গরুর মাংসের কেজি বেড়ে ৮০০ টাকা হয়ে গেছে। গরু ব্যবসায়ীরা বলছেন, পথেঘাটে চাঁদাবাজির কারণে তারা বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন। ভোক্তা অধিকার বলছে, আমরা এই বিষয়টা নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ অসহায়। বিশ্ব সংকটের পাশাপাশি চাঁদাবাজির কারণেও বাড়ছে—এ ব্যাপারে কাদের বলেন, 'চাঁদাবাজি একটা বিষয় অবশ্যই। দেশের প্রধানমন্ত্রী নিজেই চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠিন বক্তব্য রেখেছেন এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।'
তিনি বলেন, 'একটা বিষয় শুরু হলে রাতারাতি বন্ধ হয়ে যাবে এমন তো ভাবার কোনো কারণ নেই। প্রধানমন্ত্রী বলার পর সবাই নড়েচড়ে বসেছেন। এখানে যার যে দায়িত্ব আছে পালন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা অনুযায়ী সবাই কিন্তু তাদের তৎপরতা শুরু করে দিয়েছে।
'দ্রব্যমূল্য একটা বিষয়। অর্থনীতিতে যখন সংকট তখন বাজার ওঠানামা করে। ওঠানামা করে এটাই স্বাভাবিক, এটা বাজারের ধর্ম। অপেক্ষা করেন, আপনাদের তো না খেয়ে (খাইয়ে) রাখিনি! দেশের মানুষ খেতে পাচ্ছে। একটা মানুষও না খেয়ে মরেনি, অনেক ভালো আছে,' যোগ করেন তিনি।
| দেশের দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের মানুষ খেতে পাচ্ছে। একটা মানুষও না খেয়ে মরেনি, অনেক ভালো আছে। |
কাউন্সিলের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ কোন্দল সমাধান করবে আওয়ামী লীগ | সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা নিয়ে জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে অভ্যন্তরীণ কোন্দল চলছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মধ্যে।
দলের নেতাকর্মীদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়ার পর থেকেই এই কোন্দল শুরু হয়। অভ্যন্তরীণ এই কোন্দল নিরসনে এখন পর্যন্ত বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগ।
হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৭ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত অন্তত ৩৯টি জেলায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যকার সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন নিহত, ৬০ জন গুলিবিদ্ধ ও ৪৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে নেতাদের অবিলম্বে জেলা, উপজেলা ও সিটি ইউনিটজুড়ে কাউন্সিল করার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি যাদের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাদের নিয়েও কাউন্সিল করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
কাউন্সিল হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি, এমন এলাকাগুলোতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন দলের সভাপতি।
এসবের উদ্দেশ্য হলো—দলকে তৃণমূল পর্যায়ে পুনর্গঠন করা ও সাংগঠনিক কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়টি নিশ্চিত করা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের চলতি মাসের শেষের দিকে সমস্যাগ্রস্ত জেলাগুলো ভ্রমণ করে বিরোধের সমাধান ও মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া ইউনিটগুলোতে নতুন কমিটি গঠনের তদারকি করতে বলা হয়েছে।
সম্প্রতি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথসভায় আটটি বিভাগের দায়িত্বে থাকা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের এসব সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ইউনিট ও সহযোগী সংগঠনের জন্য কাউন্সিল করার নির্দেশ দেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ কোন্দল বা মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির নেতাদের হয় ঢাকায় ডাকা হবে বা কেন্দ্রীয় নেতারা সমস্যা সমাধানের জন্য সেসব জায়গায় যাবেন।
সূত্র আরও জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় নেতারা এই মাসের শেষ থেকে অভ্যন্তরীণ কোন্দল-প্রবণ জেলাগুলোতে সফর শুরু করবেন এবং আগামী মাসের মধ্যে মেয়াদ শেষ হওয়া ইউনিটগুলোতে নতুন কমিটি গঠনের কাজ শেষ করবেন।
দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, 'দলকে তৃণমূল পর্যায় থেকে পুনর্গঠন করা হচ্ছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। জাতীয় নির্বাচনের কারণে এটি স্থগিত ছিল। এখন তা আবার শুরু করা হয়েছে।'
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, ক্ষমতাসীন দলের জেলা পর্যায়ে ৭৮টি সাংগঠনিক ও উপজেলা পর্যায়ে ৪৯৫টি ইউনিট। সময়মতো কাউন্সিল না হওয়ায় ৩০টিরও বেশি জেলা ইউনিটের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, যেখানে ২৭টি জেলা ও শহর পর্যায়ের ইউনিটে অভ্যন্তরীণ কোন্দল অব্যাহত রয়েছে। জেলা-পর্যায়ের ১৮টি ইউনিটে কাউন্সিল হওয়ার পরেও এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হয়নি।
যেমন: বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১২ সালের ডিসেম্বরে।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণে আওয়ামী লীগের প্রধান ইউনিটগুলোর বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থা বিশৃঙ্খল। বারবার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও ৫০টি থানা-পর্যায়ের ইউনিট ও সিটি ইউনিটের আওতাধীন ১৪০টি ওয়ার্ডে এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি, যেখানে এর জন্য ২০২২ সালের জুন থেকে নভেম্বরের মধ্যে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
এ ছাড়াও, উভয় সিটি ইউনিটের মেয়াদ ২০২২ সালের নভেম্বরে শেষ হয়। তবে এখনো নতুন কাউন্সিল হয়নি।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কাউন্সিল (উত্তর ও দক্ষিণ) ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়।
প্রায় এক বছর পরে ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
দলীয় সনদ অনুযায়ী, এ ধরনের কমিটির মেয়াদ তিন বছর।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি ইউনিটের অধীনে ২৪টি থানা ও ৭৫টি ওয়ার্ড রয়েছে। এই ইউনিটগুলোর কাউন্সিল ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
তবে কোনো ওয়ার্ড বা থানা ইউনিটে কোনো কমিটি ঘোষণা করা হয়নি।
ঢাকা মহানগর উত্তর ইউনিটের অবস্থাও দক্ষিণের মতোই। ২০২২ সালে মোট ৬৪টি ওয়ার্ড এবং ২৬টি থানা ইউনিটের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো কমিটি ঘোষণা করা হয়নি।
যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বলেন, 'আমরা ইতোমধ্যেই খসড়া কমিটিগুলো দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দিয়েছি এবং দলীয় সভাপতির অনুমোদনের পর তা ঘোষণা করা হবে।'
দলীয় সনদ অনুযায়ী, আগের কমিটি ভেঙে দেওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে নতুন কমিটি ঘোষণা করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
| সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা নিয়ে জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে অভ্যন্তরীণ কোন্দল চলছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মধ্যে। |
নির্বাচনের পরে আওয়ামী লীগ আরও বেশি কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠেছে: ফখরুল | দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আরও বেশি বেপরোয়া ও কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ সোমবার বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক মো. তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে তিনি এই মন্তব্য করেন।
একইসঙ্গে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও দিনাজপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. আখতারুজ্জামান মিয়া এবং চিরিরবন্দর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরে আলম সিদ্দিকী নয়নের জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
ফখরুল বলেন, '৭ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী এখন আরও বেশি বেপরোয়া ও কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠেছে। রাষ্ট্রক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ গণতন্ত্রমনা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নানান কায়দায় দমন-পীড়নের মাত্রা বৃদ্ধি করেছে।'
মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে বিরোধী নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠানোর মাধ্যমে এক জুলুমের সংস্কৃতি তৈরি করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'মো. আখতারুজ্জামান মিয়া এবং নুরে আলম সিদ্দিকী নয়নের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর ঘটনা তারই ধারাবাহিকতা।'
বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'বর্তমানে দেশে আইনের শাসন ও সুশাসন নেই বলেই গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশগ্রহণরত নেতাকর্মীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দেশে এক সর্বগ্রাসী অরাজকতা বিদ্যমান রয়েছে। দুঃশাসন প্রলম্বিত করার জন্যই রাষ্ট্র-সমাজে ভীতি ও আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।'
| দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আরও বেশি বেপরোয়া ও কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। |
মনজুরুল আহসান খানকে সিপিবির উপদেষ্টা পদ থেকে স্থায়ী অব্যাহতি | শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের দায়ে মনজুরুল আহসান খানকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উপদেষ্টার পদ থেকে স্থায়ী অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, তার সদস্যপদ আগামী ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
সদস্যপদ স্থগিত থাকাকালীন তার কার্যকলাপ নিয়ে নতুন কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হলে আবার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আজ সোমবার সকাল ১১টায় সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সভাপতি মো. শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় বক্তব্য দেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহীন রহমান, অধ্যাপক এ. এন. রাশেদা, লক্ষ্মী চক্রবর্তী, মোতালেব মোল্লা, কর, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রেজা, কোষাধ্যক্ষ ডা. ফজলুর রহমান, কন্ট্রোল কমি সদস্য মাহবুব আলম, ডা. এম. এ. সাঈদ, আবু হোসেন, কাজী সোহরাব হোসেন, সুজাত আলী, কেন্দ্রীয় সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, রফিকুজ্জামান লায়েক, অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন, আম ক্বাফি রতন, অধ্যাপক এম এম আকাশ, আহসান হাবীব লাবলু, ডা. দিবালোক সিংহ, এমদাদুল হক।
আরও বক্তব্য দেন জলি তালুকদার, মন্টু ঘোষ, মনিরা বেগম অনু, সোহেল আহমেদ, মাকছুদা আক্তার এস.এ রশিদ, রাগীব আহসান মুন্না, হাসান তারিক চৌধুরী, ডা. সাজেদুল হক রুবেল, লুনা নূর, হোসেন, আইনুন্নাহার সিদ্দিকা, আসলাম খান, মহসীন রেজা, নিমাই গাঙ্গুলি, মানবেন্দ্র দেবা আক্তার, হাফিজুল ইসলাম, আশরাফুল আলম, মোহাম্মদ আলতাফ হোসাইন, ইসমাইল হোসেন, খন্দকার রহমান, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান সেলিম, ইদ্রিস আলী, জাহিদ হোসেন খান, মোসলেহ উদ্দিন, ইসলাম, হাসিনুর রহমান রুশো, সাদেকুর রহমান শামীম, নলিনী সরকার ও সাজিদুল ইসলাম।
| শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের দায়ে মনজুরুল আহসান খানকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উপদেষ্টার পদ থেকে স্থায়ী অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, তার সদস্যপদ আগামী ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। |
এমপি সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে আ. লীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতনের অভিযোগ | স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের সমর্থকদের ওপর নির্যাতন, জনপ্রতিনিধিদের গালাগাল এবং মুক্তিযোদ্ধাকে অসম্মান করার অভিযোগ উঠেছে খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে।
আজ সোমবার দুপুরে খুলনার রূপসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দীন বাদশা সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ তোলেন।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেওয়া নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছেন খুলনার রূপসা, তেরখাদা উপজেলা এবং দিঘলিয়া উপজেলার একাংশ নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসনের এমপি সালাম মুর্শেদী।
আওয়ামী লীগ নেতা কামাল উদ্দীন বলেন, এমপি সালাম মুর্শেদী সম্প্রতি তার সংসদীয় এলাকায় ইউনিয়ন পর্যায়ের অনুসারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন। এসব সভায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের অশালীন ভাষায় হুমকি দিয়েছেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষের নেতাদের সালাম দিতেও জনগণকে নিষেধ করেছেন।
এ ছাড়াও তিনি এখতিয়ারের বাইরে রূপসার আইচগাতী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেছেন বলে অভিযোগ করেন কামাল উদ্দীন।
এমপির প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, সালাম মুর্শেদী উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মীরজাফর, কুকুর বলে গালি দিয়েছেন। তিনি রূপসা উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বাদশাকে প্রকাশ্য সভায় রাজাকার বলে অপবাদ দিয়েছেন। এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরই সালাম মুর্শেদীর নির্দেশে খুলনা-৪ আসনের ভিন্ন এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী পক্ষে অবস্থানকারী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অত্যাচার, নির্যাতন, রক্তাক্ত জখম এবং তাদের সম্পদ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল শুরু হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা সসম্মানে চলতে পারছি না, কথা বলতে পারছি না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আকুল আবেদন, তিনি যেন এসব অভিযোগ তদন্ত করে সালাম মুর্শেদীর কার্যকলাপ পরিবর্তন করার ব্যবস্থা করেন।
অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে সালাম মুর্শেদীর মোবাইল ফোনে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
| স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের সমর্থকদের ওপর নির্যাতন, জনপ্রতিনিধিদের গালাগাল এবং মুক্তিযোদ্ধাকে অসম্মান করার অভিযোগ উঠেছে খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে। |
উপজেলা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন হবে না, জনপ্রিয়তা যাচাই হবে: ওবায়দুল কাদের | আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে না, নেতাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করা হবে।
আজ সোমবার দুপুরে ফেনীর দাগনভূঁঞা পৌর এলাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে নির্বাচনে না এসে বিএনপি যে ভুল করেছে, তার খেসারত তাদের সামনে দিতে হবে। তারা অচিরেই টের পাবে রাজনীতিতে তারা কতটা সংকুচিত।'
তিনি বলেন, 'অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে এবার সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন ভণ্ডুল করতে দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাউকে ভয় করেননি। সাহস নিয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে তিনি সব চক্রান্ত মোকাবিলা করেছেন। বিশ্বে দীর্ঘস্থায়ী নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়েছেন।'
মন্ত্রী বলেন, 'ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত করা হবে। এর দুই পাশে দুটি সার্ভিস লেন হবে। অদূর ভবিষ্যতে এটিকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উন্নীত করার বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় আছে।'
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'শেখ হাসিনা একজন ভালো মানুষ বলেই জনগণ তাঁকে ভালবাসেন। ভোট দিয়ে চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী করেছেন।'
তিনি বলেন, 'সামনে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে না, দলীয় নেতাদের জনপ্রিয়তা যাচাই হবে। যারা মানুষের জন্য কাজ করেছেন জনগণ তাদের বেছে নেবে। নিজেদের মধ্যে মনোমালিন্য ভুলে যান। একযোগে কাজ করুন।'
এ সময় ফেনী-২ আসনের (সদর) সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
| আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে না, নেতাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করা হবে। |
খতনা নিয়ে মানুষ শঙ্কিত, দুর্নীতির কারণে চিকিৎসা ব্যবস্থা আস্থা হারাচ্ছে: হানিফ | সুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে দুই শিশুর মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, আমরা লক্ষ করছি, যেসব পরিবারে খতনার বিষয় আছে, তারা শঙ্কিত।
দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতির কারণে চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর থেকে মানুষের আস্থা হারিয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।
আজ রোববার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
হানিফ বলেন, 'উন্নয়ন আমাদের যথেষ্ট হয়েছে। আমরা মনে করি, এই বাংলাদেশ যে অবস্থায় ছিল সেখান থেকে আজকে যেখানে এসেছে, এই উন্নয়ন বাংলাদেশের জনগণের জন্য যথেষ্ট। আমাদের এখন প্রয়োজন এই উন্নয়নকে ধরে রাখা। টেকসই উন্নয়ন বলতে আমরা যেটা বোঝাই। আমাদের এই উন্নয়নকে ধরে রাখাটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।'
তিনি বলেন, 'এই উন্নয়নকে ধরে রাখার জন্য দেশের সামনে, সরকারের সামনে যেটা সবচেয়ে বড় সমস্যা, সেটা হলো আমাদের মানুষের মধ্যে সততা, নীতি-নৈতিকতা, মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়ের দিকে জাতি চলে যাচ্ছে। এখান থেকে যদি বের হয়ে আসতে না পারি, তাহলে এই উন্নয়ন ধরে রাখা কিন্তু কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।'
খতনা করাতে গিয়ে দুটি শিশুর মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে হানিফ বলেন, 'একই ঘটনায় আরেকটি শিশু মৃত্যুঝুঁকিতে ছিল। আমরা লক্ষ করছি, যেসব পরিবারে খতনার বিষয় আছে, তারা শঙ্কিত। চিকিৎসকদের কোন গাফিলতির কারণে এই দুটি শিশু প্রাণ হারাল, সেটা নিয়ে অনেকেই শঙ্কিত। এই অবস্থাটা কেন হয়েছে? জাতি অবাক হলেও আমি কিন্তু খুব একটা বিস্মিত হইনি।
'চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশের একমাত্র মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ কর্ণধারকে নিয়ে যখন গণমাধ্যমে লেখালেখি হয়—তার অনৈতিকতা নিয়ে, স্বজনপ্রীতি নিয়ে, নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে লেখালেখি হয়, তখন কিন্তু চিকিৎসার ওপর আস্তে আস্তে মানুষের আস্থাটা কমে যায়। চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর থেকে মানুষের আস্থা হারিয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক,' যোগ করেন তিনি।
হানিফ বলেন, 'পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পদ উপাচার্য। সেই উপাচার্যদের বিষয়ে গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের তথ্য চলে আসছে। কেউ স্বজনপ্রীতির সঙ্গে জড়িত, কেউ নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। এমনকি, অনেক উপাচার্যের অডিও রেকর্ডও চলে আসছে গণমাধ্যমে; যারা নিয়োগের জন্য সরাসরি প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন আর্থিক সুবিধা নেওয়ার জন্য। এটা যদি একটা সর্বোচ্চ পদধারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে হয়, তাহলে সেই জাতির ভবিষ্যৎ নিয়ে, তার নীতি-নৈতিকতা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা ছাড়া কিছু থাকে না।'
গ্রিক দার্শনিক প্লেটো উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, 'আজকে আমাদের শিক্ষিত এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিদের যদি নীতি-নৈতিকতার যদি এই অবস্থা হয়, তাদের যদি এই মূল্যবোধ হয়, তাহলে রাষ্ট্র আস্তে আস্তে অবক্ষয়ের দিকে যাবে এটাই স্বাভাবিক।'
আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, 'বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এ দেশের ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এই উন্নয়ন-অগ্রগতি ধরে রাখার জন্য এখন আমাদের দরকার হচ্ছে, আমাদের এই সমাজ যে নীতি-নৈতিকতা, সততার যে অবক্ষয়ের মধ্যে যাচ্ছে সেটাকে আমরা কীভাবে আবার ফিরিয়ে আনতে পারি, আমরা মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে পারি সেই লক্ষ্যে কাজ করা প্রয়োজন।'
| সুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে দুই শিশুর মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, আমরা লক্ষ করছি, যেসব পরিবারে খতনার বিষয় আছে, তারা শঙ্কিত। |
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পেছনে কী ছিল—বাংলাদেশের মানুষ সেই সত্য জানতে চায়: মঈন খান | দ্রুততম সময়ে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে দায়ের মামলা নিষ্পত্তির দাবি জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, এই ঘটনা কীভাবে ঘটেছে, এই ঘটনার যবনিকার পেছনে কী ছিল—আজকে বাংলাদেশের মানুষ সেই সত্যি জানতে চায়।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর বনানীতে সামরিক কবরস্থানে শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
মঈন খান বলেন, 'আজকে থেকে ১৫ বছর আগে বিডিআরের যে শোকাবহ ঘটনা ঘটেছিল, সেই ক্ষত দিয়ে আজও বাংলাদেশের মানুষের বুকের রক্ত ঝরে পড়ছে। আমরা আজও জানি না এই ঘটনার পেছনের ইতিহাস কী। আমরা সেই শোক বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছি।'
তিনি বলেন, 'ইতিহাসের পাতায় পেছনে ফিরে গিয়ে বলতে হয়, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ পর্যন্ত এমন কোনো একটি স্থানে এমন কোনো যুদ্ধ হয়নি, যেখানে একসঙ্গে ৫৭ জন অফিসার প্রাণ দিয়েছেন।'
মঈন খান আরও বলেন, 'আজকে সেই কথাটি আমাদের পুনরায় বলতে হয় যে, এই ঘটনা কীভাবে ঘটেছে, এই ঘটনার যবনিকার পেছনে কী ছিল—আজকে বাংলাদেশের মানুষ সেই সত্যি জানতে চায়।'
পিলখানা হত্যাকাণ্ডে মামলার বিচারে বিলম্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'একটি কথা আছে আমাদের বাংলা ভাষায়, বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে। ইংরেজি ভাষায় একটি কথা আছে, যদি বিচার বিলম্বে হয়, তাহলে সেই বিচারের কোনো মূল্য থাকে না।
'সেই বিচার প্রক্রিয়া এখনো ঝুলে আছে। কেন ঝুলে আছে? কেন সেই অভিযোগে যাদের কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে, আজকে পর্যন্ত কেন তারা বিনা বিচারে কারাবাস করছে? একটি জাতির ইতিহাসে এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনা—কোন জাতির ইতিহাসে কখন ঘটেছে আমাদের জানা নেই,' যোগ করেন তিনি।
এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, 'আজকে শুধু একটি কথাই বলবো, বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক যেন সুশাসনের মাধ্যমে, আইনের মাধ্যমে ন্যায় বিচার ফিরে পায়। আমরা সেটাই প্রত্যাশা করি।'
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পেছনে বিএনপির ইন্ধন ছিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান—এ ব্যাপারে আপনার মত কী, গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমি ব্যক্তি পর্যায়ে কোনো কথা বলতে চাই না। বিচারকার্যে ইন্টারফেয়ারেন্স যুক্তিযুক্ত নয়। যে বিচারাধীন বিষয় আছে, আমাদের যারা বিচারক রয়েছেন, তারা তাদের নীতিতে অবিচল থেকে ন্যায় বিচারের মাধ্যমে এই বিষয়ের অতি দ্রুত সুরাহা করবেন, আজকে ১৫ বছর পরে আমরা সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।'
| দ্রুততম সময়ে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে দায়ের মামলা নিষ্পত্তির দাবি জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, এই ঘটনা কীভাবে ঘটেছে, এই ঘটনার যবনিকার পেছনে কী ছিল—আজকে বাংলাদেশের মানুষ সেই সত্যি জানতে চায়। |
একটা কাজ দিলাম, কেউ কিছু পয়সা পেল—এই চিন্তা করে প্রকল্প গ্রহণ করবেন না: প্রধানমন্ত্রী | প্রকল্প গ্রহণে সাশ্রয়ী হওয়ার পাশাপাশি কৃষিকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে জনপ্রতিনিধিদের আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস ২০২৪ উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে আজ রোববার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিনি এ কথা বলেন।
ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমাতে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা এখন সোলার ব্যবহার করছি, আমাদের পরিকল্পনা আছে আমাদের যত কৃষি কাজে যতগুলো সেচ ব্যবস্থা, আমরা সবগুলোতে সোলার ব্যবস্থাপনা করে দেবো। কারণ দিনের বেলা প্রচুর রোদ এবং ভালো ব্যবস্থা আছে, পানি তুলে রেখে সেই পানি আমরা ব্যবহার করতে পারি। তাহলে বিদ্যুতের ওপর চাপ থাকবে না। আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি এ কথা সত্য। বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে। কারণ বিদ্যুৎ উৎপাদনে কিন্তু অনেক খরচ হয়। এত বেশি টাকা খরচ হয়, আমরা কিন্তু খুব কম টাকা নিই।
'এখন যেমন আমরা ঠিক করেছি যে, যে যত বেশি ইউনিট ব্যবহার করছে তাকে তত বেশি টাকা দিতে হবে। কারণ আমরা যে ভর্তুকি দিচ্ছি; আমার ২০ টাকা যদি লাগে করতে আমি ছয় টাকা নিচ্ছি। যারা বেশি বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে তারাই লাভবান হয়। বাড়িতে কয়েকটা এয়ার কন্ডিশনার আছে, টেলিভিশন, লিফট, তারাই লাভবান হয়। এখন থেকে সেভাবে হবে না। একটা নির্দিষ্ট ইউনিট পর্যন্ত যে ব্যবহার করে তার জন্য কিছু ছাড় দেওয়া আছে, যারা নিম্নবিত্ত কিন্তু এর উপরে যে যত বেশি ব্যবহার করবে তার বিদ্যুতের মূল্য তত বেশি বৃদ্ধি পাবে। সেইভাবেই আমরা করতে চাই। তাছাড়া এখন তো আমরা মিটার দিয়ে দিচ্ছি,' যোগ করেন তিনি।
করোনা অতিমারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে প্রভাবে মূল্যস্ফীতির প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমি তখন থেকে সবাইকে আহ্বান করেছিলাম, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। যার যতটুকু জমি আছে আপনারা চাষ করেন। এটা করতে হবে।'
এ সময় সমবায়ের মাধ্যমে চাষ করার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, 'আমরা গবেষণা করে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি কিন্তু আর কত? আমাদের জনসংখ্যা বাড়ছে। চাষ উপযোগী জমি আমাদের সংরক্ষণ করতে হবে। প্রতিটি এলাকায় পরিকল্পিতভাবে একটা মাস্টার প্ল্যান করে যদি করা যায়, তাহলে দেখা যাবে যে জমিতে আমরা উৎপাদন বাড়াতে পারি।'
জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, 'একটি অঞ্চলের কী কী পণ্য তার ওপর ভিত্তি করে প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে তোলা। কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প, সেগুলো গড়ে তোলা। এসএমই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আমরা অর্থ দিচ্ছি। আমরা কর্মসংস্থান ব্যাংক করে দিয়েছি। বিনা জামানতে তার মাধ্যমে টাকা পাওয়া যায়। বর্গা চাষিদের বিনা জমানতে কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে আমরা ঋণ দিচ্ছি। কাজেই আমরা কৃষি ক্ষেত্রে শুধু ভর্তুকিই দিচ্ছি না, কৃষিও তো আমাদের দেয়। কাজেই সেদিকে লক্ষ রেখে সবাই যদি একটু কাজ করেন দেখবেন, বাংলাদেশ সেই পুকুর ভরা মাছ, গোলা ভরা ধান, ফুলে-ফসলে ভরে উঠবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে কোনো হাহাকার থাকবে না, দারিদ্র্য থাকবে না।
'যদিও দারিদ্রের হার ৪১ ভাগ থেকে আমরা ১৮ দশমিক সাত ভাগে নামিয়ে এনেছি, আর হত দরিদ্র ২৫ দশমিক এক ভাগ ছিল, তা এখন পাঁচ দশমিক ছয় ভাগে নেমে এসেছে। ইনশাল্লাহ, এই বাংলাদেশে কোনো মানুষ হত দরিদ্র থাকবে না। আর কেউ যেন দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত না হয় সে ব্যবস্থা করা। আমরা এগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি, আপনাদের কাছে আমার এটাই আবেদন থাকবে যে, একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে জনগণের কাছে যে ওয়াদা দিয়ে এসেছেন সেটা আপনারা রক্ষা করবেন,' যোগ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
প্রকল্প গ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'এটা আমিই দেখেছি, ওখানে আমাদের অনেক সরকারি অফিসাররাও থাকে, নানা রকম বুদ্ধি পরামর্শও দেয়। আর আমাদেরও কেউ কেউ মনে করে এখানে একটা স্থাপনা করলেই তো ভালো একটা কমিশন পাওয়া গেল বা কিছু পয়সা কামাই করা গেল। দয়া করে এই ব্যবস্থায় যাবেন না।
'আপনার এলাকার জন্য কোনটা করলে পরিবেশ সংরক্ষণ হবে। মানুষ উপকৃত হবে সেগুলো দেখেই প্রকল্প গ্রহণ করা। যত্রতত্র, যেখানে-সেখানে একটা কিছু করেই ব্যাস ফেলে দেওয়া না। কোনো জলাভূমি, খাল, নদী, বিল যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সেদিকে লক্ষ রেখে যত্রতত্র যেখানে-সেখানে কোনো কিছু না করা। প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের অর্থ সাশ্রয় করতে হবে। অর্থ সাশ্রয় করেই কাজ করতে হবে যেন জাতীয়ভাবে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করতে পারি,' বলেন তিনি।
প্রকল্প গ্রহণ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করতে হবে বলেও এ সময় দিক-নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা আরও বলেন, 'শুধুমাত্র ওই একটা কাজ দিলাম, আর সেখান থেকে কেউ কিছু পয়সা পেল, এই চিন্তা করে প্রকল্প কেউ দয়া করে গ্রহণ করবেন না।'
আওয়ামী লীগ সরকারে নেওয়া নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা আরও বলেন, 'এত কিছু করা হচ্ছে এ দেশের মানুষের জন্য। আমরা একাত্তর সালে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এই স্বাধীনতা ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। এই স্বাধীনতার সুফল প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাব সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আর সেটা আমরা করতে পারব একমাত্র আপনারা যদি সক্রিয়ভাবে কাজ করেন, মানুষের সেবা করেন, তখন এটা করা সম্ভব। বাংলাদেশটাকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব, ৪১ সালের বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।'
| প্রকল্প গ্রহণে সাশ্রয়ী হওয়ার পাশাপাশি কৃষিকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে জনপ্রতিনিধিদের আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। |
পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটবে বেগম জিয়া আগেই জানতেন: বিমানমন্ত্রী | বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আগেই জানতেন পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর বনানীতে সামরিক কবরস্থানে শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
ফারুক খান বলেন, 'দুটি মামলা হয়েছে, একটি হত্যার ও একটি বিস্ফোরকের মামলা। বিচারের যে নিয়ম, সেই নিয়ম তো আমাদের পালন করতে হবে। সেটা না হলে আবার অন্য দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবো। আমি শুনেছি, বিচারের কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে।'
তিনি বলেন, 'যারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে এবং আমাদের পার্টি—আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও আমরা দাবি করি, আমরা আশা করি যে, অতি দ্রুততার সঙ্গে এই মামলার মীমাংসা হবে এবং যারা দোষী তাদের কঠোরতম শাস্তি হবে।
'এর সঙ্গে যারা যারা জড়িত সবার শাস্তি হবে এবং এই ধরনের ঘটনা যাতে আর কখনো বাংলাদেশে না ঘটতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আগামীতেও নেওয়া হবে,' যোগ করেন তিনি।
মাস্টার মাইন্ডরা একেবারেই বাইরে রয়ে গেছে। আপনি সাবেক সেনা কর্মকর্তা হিসেবে কী মনে করেন যে, তাদের কি কখনো পাওয়া যাবে না—গণমাধ্যমকর্মীর প্রশ্নের জবাবে ফারুক খান বলেন, 'আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু হত্যা; মাস্টার মাইন্ডদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিচ্ছি আমরা। ঘটনার পেছনে যারা কুশীলব, কিছুটা তো আমরা জানি কারা ছিল।
'আমরা জানি, সেদিন ঘটনার কিছু পূর্বে বেগম জিয়ার বাসা থেকে একটি কালো রঙের গাড়ি কোনো প্রোটকল না নিয়ে বেরিয়ে গেছে। এতে প্রমাণিত হয়ে তিনি জানতেন ঘটনা ঘটবে,' বলেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।
তিনি আরও বলেন, 'এ ঘটনার বিচার যাতে সুষ্ঠুভাবে হয়, তার জন্য কাজ চলছে। যারা এর পেছনে আছে তাদের খুঁজে বের করা হবে।'
| বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আগেই জানতেন পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান। |
মার্কিন উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তারের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক | যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তারের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি।
আজ শনিবার বিকেল ৩টায় রাজধানীর গুলশান-২ এর হোটেল ওয়েস্টিনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল, ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট ও এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) প্রতিনিধি দল ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বৈঠকে অংশ নেন বলে জানা গেছে।
এর আগে, আজ দুপুরে ঢাকা পৌঁছায় যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিনিধি দল। তিন দিনের সফরে শেষে ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ছাড়বেন তারা।
| যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তারের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। |
পরজীবী হলেও আমাদের চয়েস ছিল, গৃহপালিত হয়ে সেটাও হারিয়েছি: জি এম কাদের | জাতীয় পার্টি দুটি সংকটের কারণে 'সঠিক' রাজনীতির পথে হাঁটতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
নিজের জন্মদিন উপলক্ষে আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে দলীয় কার্যালয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বায়ান্নর ইতিহাস তুলে ধরে জি এম কাদের বলেন, 'ভাষার প্রতি ভালোবাসা এবং বৈষম্যের প্রতি সংগ্রাম; শহীদ যারা হয়েছিলেন, তারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে শহীদ হয়েছিলেন। ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন তারা বৈষম্যকে দূর করার জন্য—আমরা মাতৃভাষায় যদি কাজ করতে না পারি, আমাদের উর্দু ভাষায় কাজ করতে হয়, তাহলে আমাদের ছেলে-মেয়েরা ভালো চাকরি পাবে না। ব্যবসায়ীরা ভালো ব্যবসা করতে পারবে না। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে তাদের কোনো মর্যাদা থাকবে না।'
তিনি বলেন, 'আমরা ভাষাকে নিশ্চয়ই মূল্য দেবো, আমাদের মাতৃভাষা কিন্তু বৈষম্য; যার জন্য রক্ত দেওয়া হয়েছে, সেই জিনিসটাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। আমি মনে করি, আমরা শহীদ মিনার করে করে, এখন ঘরে ঘরে শহীদ মিনার করছি, স্কুল, যেখানে-সেখানে শহীদ মিনার করছি কিন্তু শহীদদের আত্মত্যাগের যে মূল বিষয় ছিল, সেটা হলো বৈষম্য। সেই বৈষম্য কি আমরা দূর করতে সক্ষম হয়েছি?
'ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য বাংলাদেশে প্রতিদিন বাড়ছে। এটা বিরুদ্ধে কি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? এটা কি অন্যায় নয়? একইসঙ্গে দলীয়করণের বৈষম্য। সরকারি দল করলে এক ধরনের নিয়ম-কানুন। সরকারি দল করলে এক রকম সুযোগ-সুবিধা, এক ধরনের মানুষকে যেটা দেওয়া হচ্ছে, আরেকজনকে সরকারি দল না করলে দেওয়া হচ্ছে না। এটা বৈষম্য, বৈষম্য মানে অন্যায়। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে ভাষা শহীদরা সংগ্রাম করেছিলেন। সেই অন্যায় এখনো হচ্ছে। সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে এগিয়ে যাওয়ার জন্য একুশে আমাদের ডাক দেয়,' যোগ করেন তিনি।
জি এম কাদের আরও বলেন, 'আমরা এটা ভুলে যাই। আমরা শুধু মাতৃভাষা ভালো, মাতৃভাষাকে সম্মান দিতে হবে—এটাই সব না! মাতৃভাষাকে নিশ্চয়ই আমরা সম্মান দেবো কিন্তু আসল যে মেসেজ, যার জন্য মানুষ বুকের রক্ত দিয়েছে সেটা হলো বৈষম্যমুক্ত সমাজ। সেই সমাজকে বর্তমান সরকার আরও বেশি করে বৈষম্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈষম্যের শিকার করা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো চাকরি-বাকরি করতে গেলে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তুমি আওয়ামী লীগ করো কি না? তোমার পরিবারের কেউ আওয়ামী লীগ করে কি না? এই বৈষম্যের বিরুদ্ধেই তো একুশের সংগ্রাম।'
একুশের আসল চেতনাকে আমরা ভূ-লুণ্ঠিত করছি বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।
ভাষা প্রতিষ্ঠার পরে বৈষম্যমুক্ত সমাজ দরকার ছিল মন্তব্য করে জাপা চেয়ারম্যান আরও বলেন, 'এই ধারাবাহিকতায় ছয় দফা আন্দোলন এসেছে, এই ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতা আন্দোলন এসেছে এবং এই ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতা যুদ্ধে জয়ী হয়েছি, যেটাকে আমরা বলি মুক্তিযুদ্ধে জয়ী হয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ মানে বৈষম্যের বিরুদ্ধে মুক্তি। সেই মুক্তিযুদ্ধে কি আমরা জয়ী হয়েছি? মুক্তিযুদ্ধে আমরা জয়ী হই নাই—স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা জয়ী হয়েছি।'
জাতীয় পার্টি নব্বইয়ের পরে আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'স্বাভাবিকভাবেই হয়েছে। ক্ষমতার বাইরে থাকলে আমাদের দেশে রাজনৈতিক দলগুলো টিকতে পারে না। যারা ক্ষমতায় থাকে তারা বিভিন্নভাবে জুলুম-নির্যাতন, বঞ্চনা করে আমাদের রাজনীতি করতে দেয়নি। ফলে দলে যারা ছিলেন, আস্তে আস্তে দল থেকে চলে গেছেন।'
কাদের বলেন, 'অনেক লোক দল করতে আসেন নিজের স্বার্থের জন্য। তারা দলের স্বার্থও দেখে না, দেশ ও জাতির স্বার্থ তো দেখেই না। সেসব লোক আস্তে আস্তে সরে গেছে। আমি মনে করি, এক সময় এটা স্বাভাবিক গতিতেই কমে গেছে। ২০০৮ সালে আমরা যখন মহাজোট করেছি, তার পরবর্তীতে অনেকে বলেছে আমরা পরজীবী হয়ে গেছি। একজন সাংবাদিক সেদিন একটা লেখায় লিখেছেন, জাতীয় পার্টি পরজীবী হয়েছে। কেন? অন্যের ওপর ভর করা ছাড়া তারা জিততে পারে না। তারা হয়তো কারও সঙ্গে জোট করলে আসন পায়।
'এই পরজীবীটা আমাদের জন্য বড় সুযোগ ছিল। বড় দুটি রাজনৈতিক শক্তির অল্প ভোটের ব্যবধানে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়। সেই অল্প ভোটটি আমরা দিতে পারতাম সব আসনে। আমাদেরকে নেওয়ার জন্য, আমাদেরকে পরজীবী করার জন্য প্রতিযোগিতা ছিল। সেটার জন্য আমাদের একটা বার্গেনিং পাওয়ার ছিল। আমরা বার্গেনিং করে অনেক কিছু আদায় করতে পারতাম। সেটা ছিল আমাদের রাজনৈতিক শক্তি,' বলেন তিনি।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, '২০১৪ এর পর থেকে আমরা সেটা হারিয়ে ফেলেছি। এখন আমরা সম্পূর্ণভাবে সেটা হারিয়ে ফেলেছি। আমরা এখন হয়েছি গৃহপালিত রাজনৈতিক দল। এটা বাস্তবতা। এটা করা হয়েছে, সরকারি দল থেকে। আমাদের ভেতরে তাদের এজেন্ট ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে বিভিন্নভাবে। তারা আমাদের দল করে কিন্তু রাজনীতি করে আরেক দলের—সরকারি দলের। তারা আমাদের দলের সুযোগ-সুবিধা নেয়, পদ-পদবি নেয়, আমাদের দলের বার্গেনিংয়ের কারণে বিভিন্ন জায়গায় চলে যায় কিন্তু দল করার সময়, রাজনীতি করার সময় তারা সরকারি দলের রাজনীতি করে। সরকারি দলের স্লোগান দেয়, সরকারি দলের কথা বলে। ফলে আমরা যখনই কোনোভাবে সঠিক রাজনীতি করতে যাই, তখনই দল ভেঙে আরেকটা দল সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। সরকার করে, সব সময় করেছে। যেন আমরা স্বাধীনভাবে রাজনীতি করতে না পারি।
'আগে পরজীবী হলেও আমাদের একটা চয়েস ছিল, আমরা এখানে যেতে পারি, আমরা আরেকখানেও যেতে পারি। সেটাই ছিল আমাদের বার্গেনিং পয়েন্ট; তোমরা যদি আমাদেরকে ভালোভাবে না দেখো, আরেকজনের কাছে যাব। সে যদি ভালোভাবে না দেখে তোমার কাছে আসব। এখন আমরা বন্দি হয়ে গেছি, একজনের কাছে ছাড়া যেতে পারব না,' বলেন তিনি।
কারণ হিসেবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, 'আমাদের আরেকজন লোক পাশে বসে থাকবেন, উনি একটা ডাক দেবেন এবং সরকার তাকে মদদ দেবে, মিডিয়া তাকে বিভিন্নভাবে কভারেজ দেবে, আর আমাদের দল ভেঙে যাচ্ছে, ভেঙে যাচ্ছে বলে ভেঙে দেওয়া হবে। আইন-কানুনে মাধ্যমে আমাদের লাঙ্গল-টাঙ্গল সব নিয়ে যাওয়া হবে—এই ধরনের ধামকি দেওয়া হবে। তার ফলে, দল বাঁচাব না রাজনীতি বাঁচাব? এই সমস্যা জাতীয় পার্টি সব সময় বহন করে যাচ্ছে। কারণ আমাদের দুর্বলতা। কারণ, আমরা লোভ-লালসা থেকে দূরে থাকতে পারি না।
'আমাদের দলে থেকে যারা আরেক দলের রাজনীতি করে, তাদের আমরা দল থেকে বের করে দিতে পারি না এবং ঝুঁকি নিতে পারি না। সামনের দিনে যদি রাজনীতিকে বাঁচাতে হয়, আমাদের এই ঝুঁকি নিতে হবে। আমাদের বুঝতে হবে, আমাদের দুর্বল করার সরকার সব সময় আমাদের পেছনে একটি জোট বানিয়ে রাখবে। যখনই আমরা সত্যিকার অর্থে আমাদের রাজনীতি করব, জনগণের রাজনীতি করব, তখনই তারা বাধা দিয়ে আমাদের দলকে ভেঙে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে। সরকার করছে এটা। কাজেই এটাকে বাঁচাতে হলে সব নেতাকর্মীকে জাতীয় পার্টি করতে হবে, যারা জাতীয় পার্টি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অন্য দল করতে চায়, তাদের দল থেকে বের করে দিতে হবে। যদি করতে পারেন দল টিকবে, যদি করতে না পারেন দল টিকবে না,' নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন তিনি।
দেশ ও জাতির কাছে গৃহপালিত দলের প্রয়োজনীয়তা নেই উল্লেখ করে এই রাজনীতিক বলেন, 'পরজীবী দলের প্রয়োজনীয়তা দেশের কাছে আছে। যেহেতু আমরা ব্যালেন্সিং ফ্যাক্টর, আমাদের কথা শুনতে বাধ্য হয় সরকার। আমাদের কথা শুনতে বাধ্য হয় যে কোনো দল। সেটুকু পর্যন্ত আমাদের রাজনৈতিক প্রয়োজনীয়তা আছে। যে মুহূর্তে আমরা একজনের কাছে বন্দি হয়ে গৃহপালিত হবো এবং উনি যেভাবে চাইবেন সেভাবে কথা বলবো, তখন জনগণের কাছে আমাদের কোনো দরকার নেই। তাহলে এই দলের জন্য জনগণ কেন ভোট দেবে? জনগণ কেন এগিয়ে আসবে? এই সমর্থন দেবে? এটা আমাদের বুঝতে হবে।'
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, 'দলকে যদি বাঁচাতে হয়, তাহলে গৃহপালিত থেকে বেরিয়ে আসেন। দরকার হলে পরজীবী থাকব। পরজীবী থেকে আমরা স্বনির্ভর হবো। আমাদের সেদিকে এগিয়ে যেতে হবে। যারা গৃহপালিত হওয়ার জন্য দায়ী, তাদের বর্জন করতে হবে।'
এ সময় নেতাকর্মীদের একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানান কাদের।
সরকারের উদ্দেশে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, 'আমরা গৃহপালিত থাকতে চাই না। সরকারকে অনুরোধ করব, এভাবে দেশের রাজনীতিকে নষ্ট করবেন না। রাজনৈতিক দলগুলো রাজনীতি করতে দেন। সবাইকে ধ্বংস করে আপনারা একক রাজনীতি করবেন সেট দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গলজনক হবে না।'
| জাতীয় পার্টি দুটি সংকটের কারণে 'সঠিক' রাজনীতির পথে হাঁটতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। |
ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব যেন চিরস্থায়ী হয়: প্রধানমন্ত্রী | আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'আমি চাই, আমার দেশের মানুষ ন্যায় বিচার পাবে। আমাদের মতো যেন বিচারহীনতায় তাদের কষ্ট পেতে না হয়।'
আজ শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত দক্ষিণ এশিয়ার একবিংশ শতাব্দীর সাংবিধানিক আদালত: ভারত-বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা শীর্ষক দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের সংবিধানে তো বিচার পাওয়ার অধিকার সকলেই আছে কিন্তু সেখানে আমাদের প্রশ্ন যে, আমরা কি অপরাধ করেছিলাম? ১৯৮১ সালে ছয় বছর আমাকে প্রবাসে থাকতে হয়, কারণ তখনকার মিলিটারি ডিকটেটর আমাকে আসতে দেবে না দেশে। রেহানাকেও আসতে দেবে না এবং তার পাসপোর্টটাও রিনিউ করতে দেয়নি।'
তিনি বলেন, 'সেই অবস্থায় আমাকে যখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি আমার অবর্তমানে নির্বাচিত করা হয়, এক রকম জোর করে—জনগণের সমর্থন নিয়েই আমি দেশে ফিরে আসি। আমি যখন আমার বাবা-মা, ভাইয়ের হত্যার বিচারের জন্য মামলা করতে যাই, সেখানে মামলা করা যাবে না। ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স দিয়ে খুনিদের বিচারের হাত থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এটা কেমন ধরনের কথা?
'মানবাধিকারের কথা শুনি, ন্যায় বিচারের কথা শুনি। সেই ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার কি আমাদের ছিল না? আমি অনেকবারই হাইকোর্টে গিয়েছি, অনেক অনুষ্ঠানে গেছি। আমি যখন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করি, আমি বারবার এই প্রশ্নটাই করেছি, বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে। আমরা বিচার পাব না। আমরা যারা ১৫ আগস্ট আপনজন হারিয়েছি, আমরা বঞ্চিত থাকব। ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করার পরে, অর্থাৎ আমাকেই ক্ষমতায় আসতে হলো ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য,' যোগ করেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'আমরা সরকারের আসার পর থেকে মানুষ যাতে ন্যায় বিচার পায়, তার জন্য আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু করি।'
এ সময় তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগ তুলে ধরেন।
ভারতীয় অতিথিদের ভাগ্যবান উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, 'ভারত-পাকিস্তান দুটি দেশ পাশাপাশি, রাষ্ট্র হিসেবে যখন প্রকাশ পেল আমরা কী দেখলাম? ভারতে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। অন্তত আমরা সে পাকিস্তান আমলই হোক, আর বাংলাদেশ হবার পরে পঁচাত্তর সালের ১৫ আগস্টের পরে হোক, কী হয়েছে? আমরা পেয়েছি, মিলিটারি ডিকটেটরশিপ। বারবার আঘাত এসেছে গণতন্ত্রের ওপর। বারবার আঘাত এসেছে বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক অধিকারের ওপর। কোনো একটা স্থিতিশীলতা ছিল না। আমরা স্বাধীনতা অর্জন করে আশা করেছিলাম যে, অন্তত আমাদের এই ভূ-খণ্ডের মানুষ একটা স্থিতিশীল জীবন পাবে। দেশের উন্নতি হবে, মানুষের উন্নতি হবে—জীবনমান উন্নত হবে।
'কিন্তু আমরা যদি হিসাব করি, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পরে সেই ৭৬ সাল থেকে ৯৬ পর্যন্ত এ দেশের মানুষ কী পেয়েছে? তাদের যে মৌলিক চাহিদাগুলো; কোনো চাহিদাই তো পূরণ হয়নি। হ্যাঁ, একের পর এক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সেই মিলিটারি ডিকটেটররা যারা এসেছে, হয়তো তারা লাভবান হয়েছে, মুষ্টিমেয় এলিট গ্রুপ তারা তৈরি করেছে কিছু মানুষকে সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করে দিয়ে। আর সাধারণ মানুষ অবহেলিত থেকে গেছে। তাদের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, তাদের সাংবিধানিক অধিকার অস্বীকার করা হয়েছে। তারা অবহেলিত, শোষিত, বঞ্চিতই থেকে গিয়েছিল। এরপর আবার ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত ঠিক একই অবস্থার শিকার এ দেশের মানুষ। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, অগ্নিসংযোগ, মামলা-মোকদ্দমা এবং আমরা বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় আমাদের অকথ্য অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। আর সাধারণ মানুষ কিন্তু সেই একই তিমিরে ছিল,' বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আজকে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতিটা হচ্ছে, সেটা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলে এবং একটা স্থিতিশীল পরিবেশ আছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। আজকে এটা প্রমাণিত সত্য যে, মানুষের জীবনে ন্যায় বিচার প্রাপ্তি, আর্থ-সামাজিক উন্নতি, এটা একমাত্র হতে পরে যখন মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করার সুযোগ হয় এবং দেশটা উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে পারে।'
আওয়ামী লীগ সরকারই বিচার বিভাগ ও নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করেছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কিন্তু আইনের ছাত্র ছিলেন। আমাদের মাতৃভাষা বাংলার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে এবং আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করতে যেয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হন। তার কাছে প্রস্তাব গিয়েছিল, মুচলেকা দিয়ে এবং ১৫ টাকা ফাইন দিয়ে তিনি আবার ছাত্র হতে পারতেন। শেখ মুজিব তখন একজন ছাত্র। তিনি বলেছিলেন, আমি যদি মুচলেকা দেই আর যদি আমি এই অর্থ দেই, তার মানে হলো আমি আমার দোষ স্বীকার করে যাচ্ছি। আমি তো দোষ করি নাই। কাজেই আমি তা করব না। কাজেই তিনি সেই রাস্টিকেটই ছিলেন। বহু বছর পরে আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাত্র কয়েক বছর আগে; চার-পাঁচ বছর আগে বোধ হয় সেই রাস্টিকেট প্রত্যাহার করে। তিনি সব সময় স্বাধীন বিচার বিভাগে বিশ্বাস করতেন এবং তার আদর্শ নিয়েই আমাদের পথ চলা। স্বাধীন বিচার বিভাগ, শক্তিশালী পার্লামেন্ট এবং প্রশাসন একটি দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।'
ভারতীয় অতিথিরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, 'আমি চাই, আমার দেশের মানুষ ন্যায় বিচার পাবে। আমাদের মতো যেন বিচারহীনতায় তাদের কষ্ট পেতে না হয়। তারা যেন ন্যায় বিচার পায় এবং দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং অর্থনৈতিক-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার সুনিশ্চিত হয়। বাংলাদেশ যেন এগিয়ে চলে এবং ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব যেন চিরস্থায়ী হয়।'
| আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'আমি চাই, আমার দেশের মানুষ ন্যায় বিচার পাবে। আমাদের মতো যেন বিচারহীনতায় তাদের কষ্ট পেতে না হয়।' |
সরকার দাম কমানোর কথা বললেও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না: বাম জোট | বাম গণতান্ত্রিক জোট বলেছে, অপ্রয়োজনীয় ও অপরিকল্পিতভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে তা জনগণের কাঁধে চাপানোর প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারের এই ভুলনীতি ও দুর্নীতির দায় সাধারণ জনগণ নেবে না।
আজ শুক্রবার বিকেল ৪টায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সভায় নেতারা এ কথা বলেন।
সভায় এই মূল্যবৃদ্ধির পথ থেকে সরে আসার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, 'ভুলনীতি ও দুর্নীতির জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়াই প্রধান কাজ।'
সভায় নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়, 'সরকার মুখে দাম কমানোর কথা বললেও যেসব সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী এই মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম হোতা, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে দক্ষ, দুর্নীতিমুক্তভাবে বিকল্প বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলা, সার্বজনীন রেশন ব্যবস্থা ও সারাদেশে ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু ছাড়া এই সংকটের সমাধান করা যাবে না। অথচ সরকার সে পথে হাঁটছে না।'
এ সময় আরও বলা হয়, 'ফসলের উৎপাদন মূল্য কমানো, সারাদেশে কম খরচে চাঁদামুক্তভাবে পরিবহন ব্যবস্থা চালু ও উৎপাদক ও ক্রেতা সমবায় গড়ে তোলার মধ্য দিয়েই উৎপাদকের ও ক্রেতার স্বার্থ রক্ষা করতে হবে। মার্কেট ফান্টামেন্টালিজমের দর্শন থেকে বেরিয়ে না আসতে পারলে এই সমস্যার সমাধান করা যাবে না।'
সভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আব্দুস সাত্তার, বাসদের (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহিদুল ইসলাম সবুজ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী ও সিপিবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. ফজলুর রহমান।
সভায় আরও বলা হয়, 'বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি হলে পণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। এর দায়ও জনগণের কাঁধে চাপানো হবে। এমনিতেই মূল্যবৃদ্ধির অত্যাচারে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। তারপর এসব মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনকে আরও কঠিন করে তুলবে।'
সভায় সরকারকে এই পথ থেকে সরে এসে বিদ্যুতের মূল্য কমানোর জন্য পথ বের করতে ও গণশুনানির আয়োজন করারও আহ্বান জানানো হয়।
সভায় বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারার প্রতিবাদে ও নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবিতে আগামী ১ মার্চ দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি নেওয়া হয়। এ ছাড়া এ সময় জেলা সফর অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
সভায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন ছাত্রনেতাকে বহিষ্কারের খবরে তীব্র ক্ষোভ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, 'সরকার ও প্রশাসন চলমান ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য নানা ধরনের অপকৌশল নিচ্ছে। এর বিরুদ্ধে ছাত্রজনতাকে রুখে দাঁড়াতে হবে।'
সভায় লুটপাট, দুর্নীতি, বিদেশের টাকা পাচার, ঋণ খেলাপির সঙ্গে জড়িত ও এর নেপথ্যের নায়কদের খুঁজে বের করে টাকা আদায় ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি জানানো হয়।
স্থল ও সমুদ্রভাগের গ্যাসসহ এসব সম্পদের ব্যবহার দেশ ও জনগণের স্বার্থে নিশ্চিত করতে, জাতীয় সম্পদের ওপর শতভাগ মালিকানা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
নেতারা বলেন, 'দুর্বল সরকারের সুযোগ নিয়ে সাম্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবাদী দেশগুলো দেশের জাতীয় সম্পদ ভাগাভাগি করে নেওয়ার প্রচেষ্টা গ্রহণ করবে। আর দুর্বল ক্ষমতাসীন সরকার নিজেদের ক্ষমতায় থাকার স্বার্থকে বিবেচনা করে এসব সম্পদ ভাগ করে বিভিন্ন দেশকে দিতে দ্বিধা নাও করতে পারে। তাই জাতীয় সম্পদ রক্ষায় দেশবাসীকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। যে কোনো অন্যায়-অযৌক্তিক কাজের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে।'
| বাম গণতান্ত্রিক জোট বলেছে, অপ্রয়োজনীয় ও অপরিকল্পিতভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে তা জনগণের কাঁধে চাপানোর প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারের এই ভুলনীতি ও দুর্নীতির দায় সাধারণ জনগণ নেবে না। |
বিএনপি আবারও বাংলাদেশে গণতন্ত্র-সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবে: নজরুল ইসলাম খান | গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনে সরকার পরিবর্তন অবশ্যই হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর গোপীবাগে কারাবন্দি অবস্থায় মারা যাওয়া ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুলের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি এ মন্তব্য করেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, 'আমরা পরিবর্তন চাই এবং বিশ্বাস করি এই পরিবর্তন অবিসম্ভাবী, অবশ্যই হবে।'
'রাজনৈতিক কর্মসূচি বিভিন্ন সময়ের দাবিতে বিভিন্ন ধরনের হয়। আমরা অনেক আন্দোলনে বিজয়ী হয়েছি, স্বৈরাচারী এরশাদ পতনের আন্দোলনে আমরা বিজয়ী হয়েছি, ১/১১ সরকার জরুরি অবস্থার মধ্যে নির্বাচন করতে চেয়েছিল, আমাদের বাধার মুখে পারে নাই। আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য চেষ্টা করছি। এই বিএনপি বাকশালের (একদলীয় শাসনব্যবস্থা) গোরস্তানের ওপর বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে, এই বিএনপি সামরিক স্বৈরশাসনের অবসানে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। কাজেই এই বিএনপি আগামী দিনে আবারও বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবে।'
সরকার পরিবর্তনের একদফার যুগপৎ আন্দোলন সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, 'আমরা যুগপৎ আন্দোলন করছি, সেই যুগপৎ আন্দোলন এখনো চলছে। তারা আমাদেরকে অভিযুক্ত করে যে, আমরা আন্দোলনে আর পারতেছি না… কয় বছর হয়েছে? বিএনপি ক্ষমতার বাইরে ১৭ বছর… আরও ১০ বছর আগের থেকে বলতেছে, ১২ বছর আগের থেকে বলতেছে যে, বিএনপি কোমর ভাঙা, বিএনপি আন্দোলন করতে পারে না… তারা (আওয়ামী লীগ) ২১ বছর ক্ষমতায় এসেছে... তাদের কি কোমর ভাঙা ছিল না সোজা ছিল?'
'যাদের ২১ বছর লাগে ক্ষমতায় আসতে, তাদের এই অভিযোগ করার কোনো অধিকার নাই যে, বিএনপি পারে না। ২২ বছরের সময়ে যেন বলে... তার আগে না। আমরা বলব তাদেরকে যেকোনোভাবেই হোক ক্ষমতা দখল করে বসে আছেন, আপনারা সুশাসন দেন… এভাবে কোনো বোন, এভাবে কোনো ভাই তারা যেন আর্তনাদ না করে। কেউ অপরাধ করলে নিশ্চয় তার শাস্তি হবে।'
বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর সরকারের দমন-পীড়নের বিষয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, 'এটা কোনো দেশ... এজন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি? আপনি যেকোনো সময়ে না জানিয়ে কাউকে উঠিয়ে নিয়ে যাবেন... যেখানে সেখানে ফেলে রাখবেন, চিকিৎসা দেবেন না, অসুস্থ মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে, এটা কোনো রাষ্ট্রের নীতি হতে পারে না। একটা রাষ্ট্রের দায়িত্ব আছে... রাষ্ট্র পরিচালনায় যারা দায়িত্বে আছে, তাদের একটা কর্তব্য আছে। কোনো দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করা হচ্ছে না।'
'অত্যাচার-নিপীড়ন এভাবে চলতে পারে না। যদি চলত, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হতো না। যদি অত্যাচারীরা চিরদিন অত্যাচার করতে পারত, তাহলে ফেরাউন-নমরুদের পতন হতো না, হিটলার-মুসোলিনির পতন হতো না। নিশ্চয়ই পতন হয়েছে এবং যারা মজলুম তাদের ওপর যে নিপীড়ন করা হয়েছে, এর বিচার হবে। আমরা তাদের রক্তের বিনিময়ে, তাদের প্রাণের বিনিময়ে এদেশে গণতন্ত্র পুণঃপ্রতিষ্ঠা করব। আমরা নিজেরাও চেষ্টা করব এবং যারা মজলুম কষ্টে আছেন, তাদের ফরিয়াদ কখনো বৃথা যাবে না।'
| গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনে সরকার পরিবর্তন অবশ্যই হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। |
সরকার শক্ত না হলে দেশ খালি হয়ে যাবে: সংসদে চুন্নু | জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, সরকার শক্তহাতে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ না করলে, দেশ খালি হয়ে যাবে।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে চুন্নু এ কথা বলেন।
পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের বরাত দিয়ে চুন্নু বলেন, 'দুদক টাকা পাচারের প্রমাণ পেলেও, ফেরত আনতে পারে না। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩০০ কোটি টাকার অনিয়ম হয়েছে। অডিটর জেনারেল অফিসের রিপোর্ট অনুযায়ী, ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬০০ কোটি টাকার অনিয়ম হয়েছে। সবচেয়ে বেশি অনিয়ম হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে।'
তিনি বলেন, 'বর্তমান সরকার যদি শক্তভাবে এগুলো নিয়ন্ত্রণ না করে, তাহলে দেশ খালি হয়ে যাবে। ব্যাংক তো খালি হয়ে গেছে। ব্যাংকের মাধ্যমে ওভার ইনভয়েস, আন্ডার ইনভয়েস করে এগুলো করা হচ্ছে। এগুলো দেখার দায়িত্ব কার?'
'অর্থমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রীসহ বাংলাদেশ ব্যাংক যদি এগুলো না দেখে, তারা তো চুপচাপ বসে থাকে। ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাচার হয়, এটা তাদেরই রিপোর্ট। তারা তাহলে কী করছে?' প্রশ্ন করেন তিনি।
চুন্নু আরও প্রশ্ন করেন, 'বাংলাদেশ ব্যাংক গত ৫ বছরে কেন কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি? তারা কি জানেন না, কোন ব্যবসায়ী কোন অ্যাকাউন্ট দিয়ে এলসি করে আন্ডার ইনভয়েস, ওভার ইনভয়েস করে টাকা পাচার করছে?'
তিনি বলেন, 'আমি এগুলো বলতে চাচ্ছি এ কারণে যে, পত্রিকা দেখলে মন খারাপ হয়ে যায়। ধানমন্ডি হাসপাতালে ২৫ বছর বয়সী একটা ছেলে এন্ডোসকপি করতে গিয়ে মারা গেল। বাচ্চাকে খতনা করাতে নিয়ে গেছে হাসপাতালে, ওই হাসপাতালের লাইসেন্সই নাই।'
'এত এলোমেলো হচ্ছে যে, আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলব, কঠোর হন। মানুষ এখন ভাবতেছে সরকারি দল, বিরোধী দল কী করে। এর জবাবদিহি কোথায়? সরকার যদি শক্ত না হয়, আমাদের তো যাওয়ার আর জায়গা নেই,' বলেন মুজিবুল হক চুন্নু।
| জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, সরকার শক্তহাতে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ না করলে, দেশ খালি হয়ে যাবে। |
আশা করছি যুদ্ধ থামলে রোহিঙ্গারা ফেরত যাবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী | নতুন করে বাংলাদেশ সীমান্তের ভেতরে আর কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, 'যুদ্ধে কী ঘটবে আমরা এখন বলতে পারব না। আরাকান আর্মিরা কীভাবে এটা শেষ করতে এখনো আমরা প্রেডিক্ট করতে পারছি না।'
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, '২৫টি দল মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। আরাকান আর্মি অনেক সুসংগঠিত, আরাকান রাজ্যেই তারা বারবার নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। তাদের কাছে ভারী অস্ত্র আছে এ রকম আমাদের কাছে মনে হচ্ছে।'
তিনি বলেন, 'আমরা আমাদের সীমান্তের ভেতরে আর কাউকে ঢুকতে দেবো না। আমরা মনে করি, যার যেটা জন্মভূমি, তারা সেখানেই থাকবে। অনেক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আমাদের দেশে আশ্রয় দিয়েছি। মিয়ানমার এবং বিশ্বের সব দেশকে আমরা বলছি, যত দ্রুত সম্ভব তাদের ফেরত নেওয়ার ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য। সেই প্রচেষ্টা আমাদের অব্যাহত আছে।
'যে দৃশ্য আপনারা এখন দেখছেন, যুদ্ধে কী ঘটবে আমরা এখন বলতে পারব না। আরাকান আর্মিরা কীভাবে এটা শেষ করতে এখনো আমরা প্রেডিক্ট করতে পারছি না। আমরা যে ঝামেলায় রয়েছি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নিয়ে; আমরা মনে করি, তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে, যুদ্ধ থামবে এবং তারা তাদের দেশে ফেরত যাবে। এটা আমরা আশা করছি,' যোগ করেন তিনি।
বিএনপির প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'এবার তো তারা নির্বাচনই করেননি। কাজেই বিরোধী দল বলে তারা দাবিও করতে পারেন না। তারা আরেকটি রাজনৈতিক দল; যেমন অন্যান্য দল আছে ছোট ছোট অনেক, সে রকম একটি দলের মতো আজকে বিএনপির অবস্থান।'
বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা একের পর এক ছাড়া পাচ্ছেন। অনেকে অভিযোগ করছেন, বিষয়টা কি এ রকম যে, এক তরফা নির্বাচন করার জন্য আওয়ামী লীগ তাদের জেলে পাঠিয়েছিল—একজন গণমাধ্যমকর্মী দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, 'এটা সঠিক নয়। বিভিন্ন কারণেই তারা অন্তরীণ হয়েছিলেন। ২৮ অক্টোবর এবং তার আগে প্রতিদিন তারা বাস পুড়িয়েছেন, মানুষ হত্যা করেছেন। আমি সব সময় বলেছি, তাদের নেতারা এসব কর্মকাণ্ডের দায় এড়াতে পারেন না।'
তিনি বলেন, '২৮ অক্টোবর সব বড় নেতারা ডায়েসে ছিলেন। তাদের সম্মুখে এসব ঘটনাগুলো ঘটেছে। প্রধান বিচারপতির বাসায় ভাঙচুর, জাজেস কমপ্লেক্স-হাসপাতাল ভাঙচুর, সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন। আমাদের স্থাপিত ক্যামেরাগুলো পর্যন্ত ধ্বংস করে দিয়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ড্রোনে আমরা রিয়েল পিকচার ধারণ করতে পেরেছিলাম বলেই—সারা বাংলাদেশ থেকে এরা নেতাকর্মীদের নিয়ে এসেছিল এই ঘটনা ঘটানোর জন্য। ড্রোনে আমরা যাদের শনাক্ত করতে পেরেছি, তাদের আমরা অ্যারেস্ট করেছি।'
বিএনপি এখনো সরকার পতনের দাবিতে রাজপথে আছে সে প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'তারা নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিক্ষোভ করলে আমাদের তো সেখানে কিছু বলার নেই। তারা যদি ভাঙচুর করে, জানমালের ক্ষতি করে, চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে, আইনের বাইরে কিছু ঘটিয়ে ফেলে, তখন আমাদের কিছু করণীয় আছে। আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে। বিএনপি কী করবে এটি তাদের ওপর নির্ভর করে।'
বিএনপি বলছে তারা নির্বাচন মানে না—এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আগে থেকেই তো বলে আসছে। সারা বিশ্বের নেতারা এই নির্বাচন দেখে মনে করেছেন একটা সুন্দর নির্বাচন হয়েছে। এতই সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে, পুলিশের আইজি মহোদয়ের ভাইও ফেল করেছেন। আমাদের রানিং মন্ত্রীরা ফেল করেছেন। কাজেই একটা অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। বাংলাদেশ কেন, পৃথিবীর সবাই এখন বলছেন, একটা সুন্দর নির্বাচন এখানে হয়েছে। কারা মানলো, না মানলো সেটার জন্য কিন্তু বসে থাকে না। সময় ও স্রোত কখনো থেমে থাকে না।'
তিনি আরও বলেন, 'এরা যদি মনে করে, নির্বাচন ঠিক হয়নি, আগামীতে আবার যখন নির্বাচন আসবে তখন এসে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এটাই আমরা মনে করি।'
| নতুন করে বাংলাদেশ সীমান্তের ভেতরে আর কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। |
বিনিয়োগে আগ্রহী দেশকে আমাদের সমুদ্রের তেল-গ্যাস উত্তোলনের আহ্বান করব: প্রধানমন্ত্রী | দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়া অঞ্চলের সমুদ্রপথে ব্যবসা-বাণিজ্য যেন সংঘাতপূর্ণ না হয় সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র বঙ্গবন্ধুর টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট, ১৯৭৪ প্রণয়নের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শুধু আমাদের একটি রাষ্ট্রই দিয়ে যাননি, তিনি স্বাধীন-সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সঙ্গে সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন বাণিজ্যিক যোগাযোগ এবং সমুদ্র অর্থনীতির গুরুত্ব নিশ্চিত করার জন্য ১৯৭৪ সালে 'টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট, ১৯৭৪' প্রণয়ন করে দিয়ে যান। তখনো জাতিসংঘ কিন্তু এ ধরনের কোনো আইন বা নীতিমালা গ্রহণ করেনি। তার আট বছর পর, ১৯৮২ সালে জাতিসংঘ আনক্লজ প্রণয়ন করে। আনক্লজ প্রণয়নের পর বাংলাদেশের সমুদ্র সীমা নির্ধারণের জন্য ১৯৭৫ পরবর্তী সরকারগুলো আসলে কোনো পদক্ষেপ আর করেনি। জাতির পিতা যেখানে রেখে গিয়েছিলেন, সেখানেই পড়ে ছিল।
'বিশাল সমুদ্রসীমা যে আমাদের রয়েছে, সেখানে আমাদের কোনো অধিকারই ছিল না। আর এই অধিকারের কথা ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পরে সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে যারা ক্ষমতায় এসেছে, ২১টা বছর এ ব্যাপারে কেউ কোনো রকম উদ্যোগ নেয়নি,' বলেন তিনি।
সংবিধান সংশোধন করে আমাদের স্থলসীমাটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব করে দিয়েছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'পরবর্তীতে সেটা আর কার্যকর করা হয়নি। ২১ বছর পরে আমরা যখন সরকারে আসি, তখন এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কাজ শুরু করি। খুব স্বাভাবিকভাবে কাজগুলো শুরু করতে হয়েছিল খুব গোপনীয়তার সাথে। পাশাপাশি আমি আনক্লজেও সই করে আসি জাতিসংঘে। সমুদ্রসীমায় আমাদের অধিকার যে আছে, সেটা যাতে নিশ্চিত হয়, সেই ব্যবস্থাটা আমি করি।'
তিনি বলেন, 'আমরা এই যে সম্ভাবনাময় সুবিশাল একটা অর্থনৈতিক এলাকা পেলাম, যা আমাদের দেশের অর্থনীতিতে অনেক অবদান রাখতে পারবে। কাজেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দূরদর্শিতা এবং বর্তমান আওয়ামী লীগের সরকারের একনিষ্ঠ প্রচেষ্টার ফল স্বরূপ জাতীয় উন্নয়নের সূচকে আজ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি, আজকের এই দিনব্যাপী সেমিনার সামুদ্রিক সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার এবং সমুদ্রকে নিরাপদ ও কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে 'টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট, ১৯৭৪' এর মূলনীতি দেশের সমুদ্রকেন্দ্রীক সকল সংস্থার মধ্যে সহযোগিতা ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।'
শেখ হাসিনা বলেন, 'ভারত মহাসাগরের মধ্যে অবস্থিত আমাদের বঙ্গপোসাগর। প্রাচীনকাল থেকে এই অঞ্চল দিয়ে বিশ্বের সকল ব্যবসা-বাণিজ্য চলমান কিন্তু ভারত মহাসাগরের সাথে সম্পৃক্ত সকল দেশগুলো এবং বাংলাদেশ ও আমাদের প্রতিবেশী দেশ; একটি কথা আমাদের সব সময় স্মরণ রাখতে হবে, এই অঞ্চলটা কিন্তু সব সময় খুব নিরাপদ। এখানে কারও সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। সেই প্রাচীনকাল থেকে বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক পথ। এই সামুদ্রিক পথ আমাদের সব দেশ সমানভাবে ব্যবহার করছে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যও চলছে। কোনো দিন কোনো রকম দ্বন্দ্ব এই অঞ্চলে কিন্তু তৈরি হয়নি।
'কাজেই আমরা সব সময় এটাই চাইবো যে, আমাদের এই অঞ্চলে যে ব্যবসা-বাণিজ্য চলে সেটা যেন সংঘাতপূর্ণ না হয়। কোনো দ্বন্দ্ব সৃষ্টি না হয়। এটা যেমন শান্তিপূর্ণ বাণিজ্যপথ, সেই শান্তিপূর্ণ বাণিজ্যপথ হিসেবেই চলমান থাকবে,' যোগ করেন তিনি।
সমুদ্র সম্পদ আহরণের তাগিদ জানিয়ে তিনি বলেন, 'আমাদের অঞ্চল যেটুকু আমরা অর্জন করেছি, সেখানে সমুদ্র সম্পদ আহরণ করা এবং আমাদের অর্থনীতিতে, অর্থাৎ যে ব্লু ইকোনমি আমরা ঘোষণা দিয়েছি, সেখানে তা অত্যন্ত কার্যকর হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। ইতোমধ্যে একটি ইনস্টিটিউট করা হয়েছে গবেষণার জন্য এবং এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।'
বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে প্রত্যাশা ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, 'এ জন্য যথাযথ বিনিয়োগও প্রয়োজন। কাজেই আমি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দেশ, যারা বিদেশে বিনিয়োগ করতে চায়। তাদেরকে আমরা আহ্বান করব যে, আমাদের সমুদ্রের তেল-গ্যাস উত্তোলনের জন্য। আমরা ইতোমধ্যে আলাপ-আলোচনা করছি, আমরা আন্তর্জাতিক টেন্ডারও দিয়েছি। সেগুলো আমরা যেন ভালোভাবে উত্তোলন করতে পারি এবং অর্থনীতিতে কাজে লাগাতে পারি।'
তিনি বলেন, 'জাতির পিতা যখন এই আইনটা করেন, সমুদ্রের দূষণ যাতে না হয়, সেই ব্যবস্থাটাও কিন্তু তিনি রেখেছিলেন। এখন তো এই বিষয় নিয়ে অনেক আলোচনা হয়, তখন কিন্তু এত আলোচনা ছিল না। সে ব্যাপারে আমরা সজাগ রয়েছি।'
বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে আমরা মাথা উঁচু করে চলবো—মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'আমরা ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ প্রণয়ন করেছি। কারণ আমাদের এই বদ্বীপটাতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম নিরাপদে, সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে পারে, জলবায়ু অভিঘাত থেকে তারা যেন রক্ষা পায় এবং সুন্দরভাবে তারা যেন বাস করতে পারে সেভাবেই আমরা কাজ করতে চাই।
'বর্তমানে অনেক জায়গায় সংঘাতপূর্ণ অবস্থা আছে কিন্তু বাংলাদেশ শান্তিতে বিশ্বাস করে। আমরা যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তি চাই। শান্তি প্রগতির পথ দেখায়, উন্নতির পথ দেখায় আর জাতিতে অগ্রসর করে, উন্নত জীবন দান করে। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি,' বলেন তিনি।
| দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়া অঞ্চলের সমুদ্রপথে ব্যবসা-বাণিজ্য যেন সংঘাতপূর্ণ না হয় সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। |
দেশ ভয়ংকর রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংকটে নিমজ্জিত: সিপিবি | বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, 'দেশ ভয়ংকর রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংকটে নিমজ্জিত। এখান থেকে দেশকে মুক্ত করতে হলে আমাদেরকে ৫২ ও ৭১ এর মূল চেতনাকে সমুন্নত রেখে এগিয়ে যেতে হবে। দেশে যে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা কায়েম হয়েছে তা মানুষের মৌলিক অধিকারকে হরণ করেছে। সেই স্বৈরশাসনের কালো থাবা থেকে দেশকে মুক্ত করা এখন সময়ের দাবি। ৫২ আমাদেরকে এই শিক্ষাই দেয়।'
আজ ২১ ফেব্রুয়ারি এক যুক্ত বিবৃতিতে তারা এ কথা বলেন।
শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সিপিবি আজ সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে ঢাকার পলাশী মোড় থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রভাতফেরি করে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করে। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রেজা, কোষাধ্যক্ষ ডা. ফজলুর রহমান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জলি তালুকদার, মানবেন্দ্র দেব, সংগঠক জাহিদ হোসেন খানসহ নেতাকর্মীরা প্রভাতফেরিতে অংশগ্রহণ করেন।
এ ছাড়া সারাদেশে সিপিবির নেতাকর্মীরা প্রভাতফেরি করে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বিবৃতিতে সিপিবি নেতারা বলেন, 'স্বৈরশাসকরা আমাদের প্রভাতফেরির সংস্কৃতিকে রাতের অন্ধকারে নিয়ে গিয়েছিল। সেই অন্ধকার থেকে প্রভাতফেরিকে রক্ত পলাশ ও শিমুলের রাঙা প্রভাতে ফিরিয়ে আনাই আমাদের অঙ্গীকার। সেই কারণে আমরা নগ্ন পায়ে রাঙা প্রভাতে শহীদবেদিতে এসেছি এবং সারাদেশে আমাদের সহযোদ্ধারা প্রভাতফেরি করে স্থানীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।'
নেতারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের 'চরম অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলার' তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, 'এটি স্মরণকালের সবচাইতে অব্যবস্থাপনাপূর্ণ ও বিশৃঙ্খল আয়োজন হয়েছে। স্বৈরাচারী ও একদলীয় শাসনের প্রভাব সুস্পষ্ট পরিলক্ষিত এই আয়োজনে, যা কিনা ভাষা আন্দোলনের মূল চেতনার সঙ্গে কোনোভাবেই সঙ্গতিপূর্ণ নয়। নিশ্চয়ই জনগণের সংগ্রাম ৫২ এর চেতনায় উদ্ভাসিত হয়ে মুক্তির পথ নির্দেশ করবে। শহীদ স্মৃতি অমর হোক।'
আজ এক বিবৃতিতে সিপিবি আরও বলে, 'উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কথা বলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সরকারের ভুলনীতি ও দুর্নীতির কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেছে। এর দায় সাধারণ জনগণ নেবে না।'
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, 'আমরা অনেকদিন ধরেই বলে আসছিলাম, সরকারের ভুলনীতির কারণেই বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে। সরকার এ কথায় কর্ণপাত করেনি, বরং খোঁড়া যুক্তি দেখিয়ে বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। আর এখন আইএমএফের শর্ত পূরণ করতে ভর্তুকি প্রত্যাহারের নামে জনগণের কাঁধে এই মূল্যবৃদ্ধির বোঝা চাপানো হচ্ছে।'
তারা আরও বলেন, 'শুধু আমরা না, বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলেছেন দাম না বাড়িয়ে বরং দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব। সরকার সেদিকে এগোচ্ছে না। রেন্টাল, কুইক রেন্টাল এখনও বন্ধ করা হয়নি। বিদ্যুৎ খাতের দায়মুক্তি আইন বাতিল করা হয়নি। অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে হাজার হাজার কোটি টাকার বোঝা জনগণের কাঁধেই চাপানো হচ্ছে।'
বিবৃতিতে নেতারা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা থেকে সরে আসার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। একইসঙ্গে মূল্য সমন্বয়ের নামে নিয়মিত বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা থেকেও সরে আসার আহ্বান জানান।
নেতারা বলেন, 'সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি অথচ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কষাঘাতে জনজীবন অতিষ্ঠ। এরপর বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি হলে বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়াবে। তারাও দাম বাড়িয়ে জনগণের কাঁধে ওই উৎপাদিত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির বোঝা চাপাবে।'
বিবৃতিতে সিপিবি নেতারা বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা বন্ধের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সচেতন দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
| বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, 'দেশ ভয়ংকর রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংকটে নিমজ্জিত। এখান থেকে দেশকে মুক্ত করতে হলে আমাদেরকে ৫২ ও ৭১ এর মূল চেতনাকে সমুন্নত রেখে এগিয়ে যেতে হবে। দেশে যে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা কায়েম হয়েছে তা মানুষের মৌলিক অধিকারকে হরণ করেছে। সেই স্বৈরশাসনের কালো থাবা থেকে দেশকে মুক্ত করা এখন সময়ের দাবি। ৫২ আমাদেরকে এই শিক্ষাই দেয়।' |
জামিনে কারামুক্ত বিএনপি নেতা আলাল | বিএনপি যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
আজ বুধবার বিকাল ৪টায় কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান।
কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কারাগারের জেলার শাহাদাত হোসেন ডেইলি স্টারকে জানান, হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর আলাল কারামুক্ত হয়েছেন।
মুক্তির পর কারাগারের সামনে তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নিতে দেখা গেছে দলের নেতাকর্মীদের।
গত ৩১ অক্টোবর রাজধানীর কাঁঠালবাগান থেকে আলালকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ কনস্টেবল নিহতের ঘটনায় পল্টন থানায় করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি তিনি।
| বিএনপি যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। |
আমরা আজও গণতন্ত্রহারা, আজও অধিকারহারা: রিজভী | বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, 'আমরা মনে করি, আমরা আজও গণতন্ত্রহারা, আজও অধিকারহারা।'
তিনি বলেন, 'যেভাবে হানাদার শক্তি আমাদের ভাষার অধিকারকে আত্মসাৎ করেছিল, হরণ করেছিল। ঠিক একইভাবে দেশীয় হানাদার শক্তি জনগণের ভোটাধিকার, জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং প্রত্যেকটি অধিকার হরণ করে একটি একচ্ছত্র রাজকীয় শাসন চালু করেছে।'
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার বায়ান্নর ভাষা শহীদদের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, 'একদফার যে আন্দোলন বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর, সেই আন্দোলনের অন্তর্নিহিত যে চেতনা আমাদের তাগিদ দেয়, সেটা হচ্ছে বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি। সেই চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমাদের গণতন্ত্রকে বিজয়ী করতে হবে। মানুষের বাক-স্বাধীনতাকে বিজয়ী করতে হবে। সেই বিজয়ের সংগ্রামে আমরা এখন লিপ্ত আছি।'
তিনি বলেন, 'ভাষা অন্বেষার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের জাতীয়তাবাদের অনুভূতি লাভ করেছিলাম ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি। একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষার অধিকারের জন্য এই সংগ্রামের যে সোপান তৈরি হয়, একের পর এক ধাপ পেরিয়ে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতা লাভ করি। সুতরাং আমাদের ইতিহাস, আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের সংগ্রামী চেতনা—সব কিছুকে ঘিরে আছে বায়ান্নর একুশের ফেব্রুয়ারির আত্মদান।'
| বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, 'আমরা মনে করি, আমরা আজও গণতন্ত্রহারা, আজও অধিকারহারা।' |
আমাদের স্বপ্ন বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষায় রূপান্তরিত করা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী | আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমাদের স্বপ্ন বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষায় রূপান্তরিত করা।
একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, '১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি যে প্রতিবাদ দিবস হবে সেই সিদ্ধান্তটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু; তখনকার তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান জেলাখানার মধ্যে বসে এই সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন—২১ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদ দিবস হিসেবে পালিত হবে। সেই একুশে ফেব্রুয়ারিতে মায়ের ভাষার দাবিতে আমাদের পূর্বসুরিরা জীবন দিয়ে ভাষার দাবি প্রতিষ্ঠা করেছেন।'
তিনি বলেন, 'এর পরে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কানাডা প্রবাসী দুজন বাঙালি সালাম ও রফিকে উদ্যোগে এবং জাতিসংঘে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রস্তাব পাঠানোর পরিপ্রেক্ষিতে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছে। এটি জাতির জীবনে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি বিশাল অর্জন।'
বাংলা পৃথিবীর অন্যতম ভাষা, যে ভাষায় ব্যাপক সংখ্যক মানুষ কথা বলে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, 'আজকে আমাদের লক্ষ্য, আমাদের স্বপ্ন হচ্ছে, বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষায় রূপান্তরিত করা।'
| আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমাদের স্বপ্ন বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষায় রূপান্তরিত করা। |
বিএনপির নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িকতার ডালপালা বিস্তার করেছে: কাদের | বিএনপির নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িকতার ডালপালা বিস্তার করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আজকে আমাদের একমাত্র বাধা হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা। সাম্প্রদায়িকতার যে বিষবৃক্ষ বিএনপির নেতৃত্বে ডালপালা বিস্তার করেছে, এই বিষবৃক্ষকে সমূলে উৎপাটিত করব আমরা প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। আজকের দিনে এটাই আমাদের অঙ্গীকার।'
তিনি বলেন, 'একুশে ফেব্রুয়ারি হচ্ছে স্বাধীন বাংলাদেশের ভিত্তি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের যে ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল, পরবর্তীকালে স্বাধিকার সংগ্রামের বিভিন্ন মাইল ফলক অতিক্রম করে একাত্তরে সদর্থক জাতীয়তাবাদের ঘোষণা আসে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ভাষণের মধ্য দিয়ে।
'আমরা প্রথমে ভাষা যোদ্ধা এবং অতঃপর একাত্তরে এসে আমরা মুক্তিযোদ্ধা। কাজেই একুশে ফেব্রুয়ারি হচ্ছে বাঙালির বিশ্বাসের বাতিঘর। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, সবুজের পটভূমিতে লাল সূর্যের পতাকা উড়বে, ততদিন আমাদের চেতনায় চির ভাস্বর হয়ে থাকবে একুশে ফেব্রুয়ারি,' বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, 'যে বাংলাদেশ ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ী হয়েছে, সেই বাংলাদেশের উন্নয়ন-সমৃদ্ধি আজকে সারা বিশ্বের বিস্ময়।'
| বিএনপির নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িকতার ডালপালা বিস্তার করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। |
মুন্সীগঞ্জে আ. লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৩ | মুন্সীগঞ্জ সদরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৩ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে আধারা ইউনিয়নের বকুলতলা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, সাবেক ইউপি সদস্য ও আধারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুরুজ মিয়ার সঙ্গে একই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আলী হোসেন সরকারের বিরোধের জেরে এ সংঘর্ষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, পূর্ব বিরোধের জেরে সুরুজ মিয়ার অনুসারী হানিফ দেওয়ান ও শামীমের নেতৃত্বে দুপুর ১২টার দিকে আলী হোসেনের লোকজনের ওপর হামলা চালানো হয় ও গুলিবর্ষণ করা হয়।
এতে শাকিল (২২), জুয়েল (২৫) ও আয়নাল (৩৫) গুলিবিদ্ধ হন। তাদের উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শৈবাল বসাক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গুলিবিদ্ধ ৩ জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে শাকিল ও জুয়েলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।'
সংঘর্ষের জেরে আলী হোসেনের লোকজন পরে ওই গ্রামের প্রতিপক্ষের দোকান ভাঙচুর করে ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় বলে স্থানীয়রা জানায়।
জানতে চাইলে আলী হোসেন সরকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বকুলতলা এলাকায় সুরুজ মিয়ার লোকজন অস্ত্র নিয়ে আমাদের লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় তাদের গুলিতে আমাদের তিনজন গুলিবিদ্ধ হয় ও আরও কয়েকজন আহত হয়েছে।'
জানতে চাইলে আধারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুরুজ মিয়া গোলাগুলির বিষয়টি অস্বীকার করেন।
তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার সমর্থকদের প্রায় ৭টি দোকান ভাঙচুর ও প্রায় ২০টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে আলী হোসেনের লোকজন। এতে আমাদের ৪-৫ জন আহত হয়েছে। আর গোলাগুলির বিষয়ে আমি জানি না।'
যোগাযোগ করা হলে মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থান্দার খায়রুল হাসান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে।'
| মুন্সীগঞ্জ সদরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৩ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। |
বিএনপির জগাখিচুড়ি জোট কোথায়, প্রশ্ন কাদেরের | বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ৫৪টি দল নিয়ে তারা সরকারবিরোধী ঐক্যজোট করেছে, এর মধ্যে সমমনাও আছে। এই ঐক্যজোটের শরিকরা এখন কোথায়?
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
কাদের বলেন, 'মঈন খান যান মার্কিন দূতাবাসে, সেখানে গিয়ে নালিশ করেন। মানবাধিকার নেই, গণতন্ত্র নেই। এ হচ্ছে আমাদের প্রধান বিরোধী দলের অবস্থা। ৫৪ রাজনৈতিক দলের জোট করেছিল। এখন কে কোথায়, কেউ জানে না। ৫৪টি দল নিয়ে তারা সরকারবিরোধী ঐক্যজোট করেছে, এর মধ্যে সমমনাও আছে। এই ঐক্যজোটের শরিকরা এখন কোথায়?
'বিএনপি নেতাদের কাছে আমি জানতে চাই, সেই ঐক্য এখন কোথায়? সেই জগাখিচুড়ি জোট কোথায়? কোনোটারই তো অস্তিত্ব নেই। এখন সরকারের ঘাড়ে দোষ দিয়ে পার পাওয়া যাবে,' প্রশ্ন রাখেন কাদের।
বিএনপি নেতাদের ২৮ অক্টোবরের ঘটনা কারাগারে নিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'পুলিশ হত্যা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, সাংবাদিকদের ওপর হামলা করা, জাজেস চেম্বার, পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে হামলা করা—এসব অভিযোগে তাদেরকে আটক করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, 'তারা তো বলেছিল আমরা পালিয়ে যাব। পালিয়ে গেল কেন? পালিয়ে গেল মানে কোনো অপরাধ করেছে। আগে তো তারা পালায়নি! সেদিন পালিয়ে গেল। সেদিন কিছু অপরাধ তারা করেছে, সে জন্য তাদের পালাতে হয়েছে। পালানোর সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারপর বিষয়টা বিচারাধীন, আদালতের বিষয়। আদালত যখন জামিন দিয়েছে, তখন তারা মুক্ত হয়েছে।'
আপনি সব সময় ছাত্রলীগের লাগাম টানার কথা বলে আসছেন। গত কয়েক দিন ধরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও তারা সংঘর্ষে জড়াচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশনার পরও তারা সংঘর্ষে জড়িয়েছে—এ ব্যাপারে মত জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ব্যবস্থা হচ্ছে, আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি নতুন করে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে যত কঠোর হওয়া দরকার, আমরা হবো।'
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস কারামুক্ত হয়ে বলেছেন, মুক্তির আন্দোলন চলবে। এ ব্যাপারে একজন গণমাধ্যমকর্মী মত জানতে চাইলে কাদের বলেন, 'বিরোধী দলের আন্দোলন বাস্তবে না হলেও মুখে আন্দোলনের কথাটা তাদের বলতে হয়। নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখতে হয়। সেটা প্রধান বিষয়। আর পাবলিককেও বোঝাতে হয়, সমমনাদের যে, আমরা আছি।'
বিরোধীদের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'বাধা দেওয়ার মতো সহিংস তৎপরতা সন্ত্রাস-অগ্নি সন্ত্রাস, এসব উপাদান যদি আন্দোলনে যুক্ত হয়, তাহলে সেখানে বাধা আসবে। তারা যদি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়ে এগিয়ে যায়, সেখানে আমরা বাধা দেবো কেন?'
| বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ৫৪টি দল নিয়ে তারা সরকারবিরোধী ঐক্যজোট করেছে, এর মধ্যে সমমনাও আছে। এই ঐক্যজোটের শরিকরা এখন কোথায়? |
খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন মির্জা ফখরুল | বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ রোববার রাত ৮টা ১০ মিনিটে গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবনে ফখরুল দেখা করতে যান। রাত সাড়ে ৯টায় তিনি বের হয়ে আসেন।
বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে সে বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
| বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। |
কারাগারে মারা যাওয়া ১৩ বিএনপি নেতার ময়নাতদন্ত হয়েছে কি না, প্রশ্ন হাইকোর্টের | গত কয়েক মাসে কারাগারে মারা যাওয়া ১৩ বিএনপি নেতার ময়নাতদন্ত করা হয়েছে কি না, এবং এসব ক্ষেত্রে কোনো অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে কি না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ সোমবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ আইনজীবীদের বলেন, 'এসব বিষয়ে তথ্য দিন এবং সম্পূরক পিটিশন দাখিলের মাধ্যমে বিস্তারিত জানাতে পারেন।'
গত ছয় মাসে কারাগারে আটক ১৩ বিএনপি নেতাকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
আবেদনে নেতাকর্মীদের মৃত্যুর ঘটনায় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ চেয়েছেন তিনি।
আজ আদালত অবশ্য এ আবেদনের শুনানি এক সপ্তাহের জন্য মুলতবি করেন।
শুনানির সময় উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, কায়সার কামাল ও মো. মাকসুদ উল্লাহ।
আবেদনের বিরোধিতা করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
শুনানির সময় আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর কাছে আদালত জানতে চান, এই রিট আবেদন গ্রহণযোগ্য কি না।
জবাবে আইনজীবী বলেন, 'রিট আবেদন গ্রহণযোগ্য এবং কারাগারে এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনা বন্ধ করতে হবে।'
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন আদালতকে বলেন, 'রিট আবেদনকারীর কোনো অভিযোগ থাকলে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (প্রতিরোধ) আইন, ২০১৩-এর অধীনে মামলা করতে পারতেন।'
| গত কয়েক মাসে কারাগারে মারা যাওয়া ১৩ বিএনপি নেতার ময়নাতদন্ত করা হয়েছে কি না, এবং এসব ক্ষেত্রে কোনো অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে কি না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। |