title
stringlengths
10
148
text
stringlengths
14
34.6k
summary
stringlengths
1
7.08k
বিদেশের চাপ আসবে, আমাদের অর্থনীতিকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্র আছে: কাদের
দেশের অর্থনীতিকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্র আছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এগুলো অতিক্রম করতে হবে, এগুলোকে ভয় পেলে চলবে না। আজ রোববার সকালে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। আজ থেকে অফিস শুরু হলো নতুন মন্ত্রিসভার, দেশি-বিদেশি কোনো চাপ অনুভব করছেন কি না? আবার নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়ে কয়েকটি সংগঠন বিবৃতি দিয়েছে—এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কাদের বলেন, 'দেশি-বিদেশি চাপ নিয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বারবার বলেছেন, চাপ বিদেশ থেকেও আছে। দেশে তো আছেই কিন্তু আমরা অতিক্রম করার ক্ষমতা রাখি, সাহস রাখি, সামর্থ্য রাখি। আমরাদের শক্তির উৎস বাংলাদেশের জনগণ। আমাদের সম্পর্ক মাটি আর মানুষের সঙ্গে। 'মাটি ও মানুষের সঙ্গে যে সরকারের, যে দলের সম্পর্ক সেই দল কোনো বিদেশি চাপ বা দেশি চাপের কাছে নতি স্বীকার করে না। আমরা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসেছি। পথে পথে বাধা, পদে পদে বাধা—এটা আমরা অতিক্রম করেছি। আমরা অতিক্রম করেছি নির্বাচনপূর্ব পরিস্থিতি। এখন নির্বাচন তো হয়েই গেছে। অনেকে ভেবেছে এই নির্বাচন আমরা করতে পারব না। তাদের সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন হয়ে গেছে। আমাদের স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়িত করেছি। এখন আমাদের চ্যালেঞ্জ আসবে আমরা জানি,' বলেন তিনি। বিদেশে চাপ আসবে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আমাদের অর্থনীতিকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্র আছে। এগুলো অতিক্রম করতে হবে, এগুলোকে ভয় পেলে চলবে না। সাহস রাখতে হবে।' তিনি বলেন, 'আজকে গ্রামীণ বাজারগুলো পর্যন্ত ভরপুর; খাদ্য সামগ্রী, ফল-মূল। আমাদের পার্বত্য এলাকায় রাস্তা হওয়ায় প্রচুর জিনিস বাজারে আসছে। দ্রব্যমূল্য দেখতে পাচ্ছেন, মানুষের কষ্ট হচ্ছে। নিম্ন আয়, স্বল্প আয়ের মানুষের কষ্ট হচ্ছে। এ কষ্ট লাঘব করা দরকার এবং এটা প্রধানমন্ত্রী নিজেও বলেছেন। এখন সর্বাত্মক চেষ্টা আমাদের চালাতে হবে। দ্রব্যমূল্য যাতে মানুষের সক্ষমতার মধ্যে থাকে।'
দেশের অর্থনীতিকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্র আছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এগুলো অতিক্রম করতে হবে, এগুলোকে ভয় পেলে চলবে না।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ১১ মামলার অভিযোগ গঠন শুনানি ১৪ ফেব্রুয়ারি
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাসহ ১১টি মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত। কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামান আজকের শুনানি মুলতবি করে নতুন তারিখ ধার্য করেছেন বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল। আজ রোববার বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি স্থগিত করা হয়। সরকারের নির্বাহী আদেশে কারাগারের বাইরে থাকা খালেদা জিয়া এখন অসুস্থ এবং গুলশানের বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। ১১টি মামলার মধ্যে ১০টি ২০১৫ সালের প্রথম তিন মাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের করা হয়েছিল এবং অন্যটি মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সম্পর্কে রাষ্ট্রদ্রোহী মন্তব্য করার অভিযোগে ঢাকার একটি আদালতে দায়ের করা হয়েছিল। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আরও তিনটি দুর্নীতি মামলা - গ্যাটকো, নাইকো এবং বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি - এখন ঢাকার অন্য তিনটি বিশেষ আদালতে বিচারাধীন। এছাড়া দ্বিতীয় অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাসহ ১১টি মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এই সংসদে বিরোধী দল খুঁজে পাওয়া যাবে?
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে, এটি ভোটের আগেই পরিষ্কার ছিল। প্রশ্ন ছিল, প্রধান বিরোধী দল কারা হবে। এই সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের ২২২ আসনের পর সবচেয়ে বেশি ৬২টি আসন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের 'স্বতন্ত্র' প্রার্থীরা। তাদের মধ্যে চারজন ছাড়া বাকি সবাই হয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কমিটির পদধারী নেতা, নয়তো সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। জোটের নেতারা নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে আরও দুটি আসন পেয়েছেন। সাধারণ ধারণা হলো, আসন সংখ্যায় সংসদের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল যাকে নেতা নির্বাচিত করবে, তিনিই বিরোধী দলীয় নেতার আসন পাবেন। তার দলই হবে সংসদের প্রধান বিরোধী দল। কিন্তু বিএনপিবিহীন ৭ জানুয়ারির এই ভোটের ফলাফলে ১১টি আসন নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা একাদশ সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ে প্রায় ছয় গুণ আসনে আওয়ামী লীগের 'স্বতন্ত্র' প্রার্থীরা জিতে আসায় আলোচনা ঘুরে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে দ্বাদশ সংসদে বিরোধী দলের আসনে কারা বসছে, তা নিয়ে জল্পনার মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন নতুন প্রধানমন্ত্রী; যিনি একাধারে সংসদ নেতা ও দলের সভাপতি। প্রশ্ন হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার আছে কি না? কিংবা তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিলে তা কতখানি গণতান্ত্রিক হবে? বিষয়টি নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার কথা বলেছে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে। এ ব্যাপারে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, 'প্রথম কথা হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রকৃত বিরোধী দল যারা, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণই করেনি। আবার আওয়ামী লীগের ছেড়ে দেওয়া ২৬টি আসনের মধ্যে জাতীয় পার্টি ১১টি আসন পেয়েছে। সুতরাং এই সংসদে একটা বিরোধী দল হবে এমন আশা তো করা যায় না।' আলী ইমাম মজুমদারের ভাষ্য, যেভাবে নিজেরাই 'বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে একপাক্ষিক একটি খেলা হয়েছে', যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচনটি হয়েছে সেটা 'গ্রহণযোগ্য না'। তাই প্রকৃত অর্থে বিরোধী দল বলতে যা বোঝায়, সেটা এই সংসদে আশা করাও উচিত হবে না। তিনি বলেন, 'আর (বিরোধী দল) হলেও যেটা হবে সেটা তাদের (আওয়ামী লীগের) সাহায্যপুষ্ট কোনো একটা অংশ হবে। সাধারণত এমনটা দেখা যায় না।' এ প্রসঙ্গে শাহদীন মালিকের বক্তব্যও অনেকটা একইরকম। বিরোধী দল নির্ধারণে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা গণতান্ত্রিক কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'গণতন্ত্র তো এখন মাইনর ইস্যু। এখন তো প্রতিটি ইস্যুতেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। সুতরাং তিনিই যে বিরোধী দল নির্ধারণের ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেবেন, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।' এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবীর ভাষ্য, 'সম্ভবত আমরা গণতন্ত্রের নতুন একটি মানদণ্ড নির্ধারণ করছি; যেখানে একজনই সব সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।' বিশ্বের আরও অনেক দেশে এমন নজির আছে মন্তব্য করে শাহদীন মালিক আরও বলেন, 'সুতরাং এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আমরা অবশ্যই গণতন্ত্রের একটি নতুন ধারার মধ্যে প্রবেশ করছি।' বিষয়টি নিয়ে তোফায়েল আহমেদের অভিমত, 'যারা নির্বাচিত হয়েছেন তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের বাইরে কেউই নেই। নৌকা যারা নিয়েছে তারা অপজিসনে যেতে চাইলে তাদের সিট থাকবে না। সিট চলে যাবে। কিন্তু আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র ৬২ জন, জাতীয় পার্টির ১১ জন, তারা একসঙ্গেও বিরোধী দল গঠন করতে পারে। আর যারা বলবে আমরা অপজিসনে যাব না, তারা স্বতন্ত্র থাকবে।' বিরোধী দল কিংবা বিরোধী দলীয় নেতা নির্বাচনে সংসদ নেতার কোনো ভূমিকা নেই উল্লেখ করে এই স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ বলেন, 'অপজিসন গ্রুপ তৈরির বিষয়টি মেম্বারদের (সংসদ সদস্য) এখতিয়ার। তারা নিজেদের নাম সই করে কাগজ স্পিকারকে দেবেন, স্পিকার সিদ্ধান্ত নেবেন। সংসদ নেতা নন। এ ক্ষেত্রে তিনি আন্ডার হ্যান্ড ডিল করতে পারেন। সেটা ভিন্ন জিনিস। কিন্তু ওপেনলি, লিগ্যালি শি ইজ নোবডি ইন ডিসাইডিং হু উইল বি দ্য অপজিশন।' বিরোধী দল হতে গেলে ন্যুনতম কতজন সদস্য থাকতে হবে, সে ব্যাপারে সংবিধান কিংবা সংসদীয় ব্যবস্থায় পরিষ্কারভাবে কিছু বলা নেই বলেও উল্লেখ করেন তোফায়েল আহমেদ। বলেন, 'কিন্তু কনভেনশন হচ্ছে ১০ শতাংশ হলে পুরোপুরি বিরোধী দলের স্বীকৃতি পেতে পারে। তোফায়েল আহমেদ আরও বলেন, 'সংবিধানের কোথাও বিরোধী দল নামক কোনো শব্দ নেই। পার্লামেন্টারি অপজিসন নামক কোনো শব্দ নেই। পলিটিক্যাল পার্টির সংজ্ঞাটাও খুব পরিষ্কার না। এটা আমাদের সংবিধানের দুর্বলতা। যে কারণে আমরা একটা কনফিউশনে পড়ছি।'
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে, এটি ভোটের আগেই পরিষ্কার ছিল। প্রশ্ন ছিল, প্রধান বিরোধী দল কারা হবে।
তারা বন্দুক নিয়ে গর্জন করবে, আর আমরা জুঁই ফুলের গান গাইবো—এটা তো হয় না: কাদের
রাজনৈতিক বিরোধীদের রাজনীতির মাধ্যমে মোকাবিলা করা হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কিন্তু সহিংসতা-সংঘাত এলে তো রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করে লাভ নেই। তিনি আরও বলেন, 'তারা গর্জন করবে বন্দুক নিয়ে, আর আমরা জুঁই ফুলের গান গাইবো—এটা তো হয় না।' আজ শনিবার সকালে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। ইশতেহার বাস্তবায়নে অনেক প্রতিবন্ধকতা আসতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বাধা-বিঘ্ন আসতে পারে, কারণ যারা এই নির্বাচন বর্জন করেছে তারা পিছু হটেনি। তারা আজকে নতুন করে আবার ষড়যন্ত্র শুরু করে দিয়েছে। এ সরকার যাতে থাকতে না পারে তারা বিদেশি বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে আছে কবে কম্বোডিয়ার মতো একটা নিষেধাজ্ঞা হয়তো এখানে আসে।' তিনি বলেন, 'আমাদের প্রধানমন্ত্রী কিন্তু কোনো নিষেধাজ্ঞা, কোনো ভিসা নীতির পরোয়া করেন না। সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে শত্রুতা নয়—এই নীতিতে শেখ হাসিনা সরকারের কার্যাবলী পরিচালিত হবে।' এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আজকে যে পরিস্থিতি, রাজনীতিকে আমরা রাজনীতি দিয়ে মোকাবিলা করতে চাই কিন্তু রাজনীতিতে যদি কেউ সন্ত্রাস, সংঘাত, সহিংসতার উপাদান যুক্ত করে। তখন উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় যা যা করতে হবে সুষ্ঠুভাবে, সুন্দরভাবে দেশ পরিচালনার জন্য আমাদের সব কিছুই করতে হবে। কিছু প্রশাসনিকভাবে মোকাবিলার প্রশ্ন আছে, কিছু আমাদের দলীয় কর্মসূচি আমরা এতদিন ওদের আন্দোলন মোকাবিলায় করেছি নির্বাচনকে সামনে রেখে; এখনো আমাদের কর্মসূচি যথারীতি চলবে। রাজনীতি তো আর বন্ধ থাকবে না! 'তবে আমরা বিরোধী দলকে রাজনীতি দিয়েই মোকাবিলা করতে চাই কিন্তু সহিংসতা-সংঘাত এলে তো রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করে লাভ নেই। তারা গর্জন করবে বন্দুক নিয়ে আর আমরা জুঁই ফুলের গান গাইবো—এটা তো হয় না,' বলেন তিনি। এখনো অনেক কাজ বাকি জানিয়ে তিনি বলেন, 'ফরিদপুর থেকে বরিশাল-কুয়াকাটা ফোর লেন করার আবশ্যকতা আছে। পদ্মা সেতু থেকে আমাদের এখন প্রতিদিন এক কোটি ২৩ লাখ টাকা টোল আদায় হয়। আমরা এটা যদি ফোর লেন করি এবং ওদিকে বেনাপোল পর্যন্ত যদি ফোর লেন করি, তাহলে পদ্মা সেতুর আয় অনেক বেড়ে যাবে। 'চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত আমরা টানেলের সুফল যদি পেতে চাই, তাহলে সেখানে ফোর লেন করতে হবে। এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত সিক্স লেন আছে, সেখান থেকে পঞ্চগড় যাবে। আরেকটা যাবে বুড়িচং পর্যন্ত। আমাদের একটা মেট্রোরেল হয়েছে, আরও পাঁচটি মেট্রো লাইন করতে হবে। এর মধ্যে দুটির কাজ শিগগির শুরু হবে,' যোগ করেন তিনি।
রাজনৈতিক বিরোধীদের রাজনীতির মাধ্যমে মোকাবিলা করা হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কিন্তু সহিংসতা-সংঘাত এলে তো রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করে লাভ নেই।
‘আ. লীগের পরাজিত নেতারাই ভোট ডাকাতির সংবাদ তুলে ধরছেন’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এবার যে নির্বাচনের নামে ভোট ডাকাতি হয়েছে, আওয়ামী লীগের পরাজিত নেতারা তা নিজেরাই সংবাদ সম্মেলন করে তুলে ধরছেন। আজ শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের উল্লেখ করে বলেন, 'ডামি প্রার্থী, ডামি ভোটার, ডামি এজেন্ট, ডামি পর্যবেক্ষক, ডামি ফলাফল, ডামি এমপি, ডামি শপথের মধ্য দিয়ে গতকাল ওয়ান ইলেভেনের কৃষ্ণতম দিবসে একদলীয় ফ্যাসিবাদের হুংকারে আরেকটি কৃষ্ণতম মেকি সরকারের যাত্রা শুরু হয়েছে।' তিনি বলেন, 'ভুয়া ভোট শেষ হতে না হতেই শেখ হাসিনা নিশিরাতের সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই গেজেট জারি, তড়িঘড়ি শপথ ও নজিরবিহীন দ্রুততায় সরকার গঠনের ঘটনা প্রমাণ করে এক অজানা ভীতি—আতঙ্ক ঘিরে ধরেছে তাকে। সব কিছু অবৈধ—ভুয়া—আর জালিয়াতির আবর্তে তাসের ঘরের ওপর সিংহাসন পাতলে এমন নির্ঘুম অনিশ্চয়তা আতঙ্কে জীবন পতিত হয়।' 'দেশের জনগণ ও গণতান্ত্রিক বিশ্ব নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে' মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'জনগণ ডামি নির্বাচন বর্জন করে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে চূড়ান্তভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি, ফলাফল, শপথ, সংসদ, সরকার সবকিছুই প্রত্যাখ্যাত, অগ্রহণযোগ্য।' '৭ জানুয়ারি তথাকথিত নির্বাচনটি ছিল গণতন্ত্রকামী জনগণের আন্দোলনের পক্ষে এবং ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ডামি নির্বাচন বর্জনের পক্ষে একটি সুস্পষ্ট গণরায়। এই ডামি সরকার ওয়ান ইলেভেনের ধারাবাহিকতা মাত্র,' যোগ করেন তিনি। বিএনপির এই নেতা বলেন, '২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি গভীর ষড়যন্ত্রের নীলনকশার মাধ্যমে দেশটাকে প্রভুদের করদ রাজ্যে পরিণত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় আবারও সেই একইদিনে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করল ডামি ভোটের অসাংবিধানিক, প্রভুদের  আজ্ঞাবাহী হাসিনার সরকার। দেশকে তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র তারা সফল করল।' তিনি বলেন, 'দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব—গণতন্ত্রের বিনিময়ে শেখ মুজিবুর রহমানের বাকশালের দ্বিতীয় সংস্করণ চালু করলেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ—ডামি লীগ—আমরা আর মামুরা মিলে দেশে ঘোষণা ছাড়াই একদলীয় সংসদীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করলেন অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিদেশি পত্র-পত্রিকা মিডিয়া এবং রাজনীতি বিশ্লেষকরা সোচ্চার কণ্ঠে বলছে, বাংলাদেশে একতরফা একদলীয় ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে একদলীয় রাষ্ট্র কায়েম করেছেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার এই বাকশালীয় ডামি তাসের ঘর জনগণ চূর্ণ করে দেয়ার প্রস্ততি নিচ্ছে।' এই সিনিয়র নেতা বলেন, 'নির্বাচনের দিনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার দিবানিদ্রায় থাকা পাতানো ডামি নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আওয়ামী লীগ আর তাদের ডামি শরীকদের মধ্যেই শুরু হয়েছে গৃহদাহ। গত বুধবার শেখ হাসিনা গতবার রাতে ভোট হওয়ার স্বীকারোক্তি দিয়ে "এবার দিনের ভোট রাতে হয়েছে বলার ক্ষমতা নেই" বলে তাদের দলের অভ্যন্তরীন বিবাদ—গৃহদাহ নিরসন করতে চাইলেও ব্যর্থ হচ্ছেন। আওয়ামী লীগের পরাজিত নেতারাই শেখ হাসিনাকে অবৈধ ভোটের প্রধানমন্ত্রী উপাধি দিচ্ছেন। এবার যে নির্বাচনের নামে ভোট ডাকাতি হয়েছে তা নিজেরাই সংবাদ সম্মেলন করে তুলে ধরছেন। এতদিন দেশের সব জনগণ বলেছে, আমরা বলেছি। আর এখন তারা নিজেরাই গত তিনটি নির্বাচনে ভোট ডাকাতির কথা বলছেন।' 'সংসদে বিদ্যুৎ বিক্রি করা এক গানের শিল্পী বলেছেন, মৃত মানুষ বিদেশে আছে তাদের ভোটও দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী ও দলটির প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ বলেছেন, নির্বাচনে অলৌকিক শক্তি কাজ করায় ভোটে কারচুপি হয়েছে, একচেটিয়া ভোট ডাকাতি হয়েছে। বরগুনা—১ আসনের আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেছেন, ভোটের ফল একহাতে তৈরি করা হয়েছে। একজন বলেছেন, গণভবন থেকে ফলাফল এসেছে। পরাজিত কুইনস পার্টির এক নেতা বলেছেন, শেখ হাসিনা তামাশার নাটক করেছেন। তার ক্ষমতায় থাকার লিপ্সা পূর্ণ করতে আমাদের সিঁড়ি বানিয়ে এখন ছুঁড়ে ফেলেছে। কাকে কত টাকা দিয়ে নির্বাচনে নেওয়া হয়েছে তা প্রকাশ্যে হিসাব দিচ্ছেন পরাজিত প্রার্থীরা,' যোগ করেন তিনি। রিজভী আরও বলেন, 'থলের বেড়াল সব বের হচ্ছে। সব অপকর্মের খবর ফাঁস হচ্ছে। এতদিন বাংলাদেশ তথা বিএনপি বলেছে শেখ হাসিনা ভোট ডাকাত। আর এখন আওয়ামী লীগের লোকজনই বলছে, শেখ হাসিনা ভোট চোর, শেখ হাসিনা ভোট ডাকাত।' 'বাংলাদেশের জনগণের গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষার প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সমর্থন অব্যাহত রেখেছে' মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'প্রতারণার মাধ্যমে শেখ হাসিনার উপহার দেওয়া দিবানিদ্রায় থাকা নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে ভেজাল নির্বাচন ও কণ্ঠরোধের গণতন্ত্র তারা প্রত্যাখ্যান করেছে। বিরোধীদের সমালোচনার ওপর সরকারের বুলডোজার চালানোর ঘটনা সর্বজনবিদিত। এই প্রতারণার ডামি নির্বাচনকে কেউ স্বীকৃতি দেয়নি। অচিরেই এই সরকার চোরাবালিতে হারিয়ে যাবে। কারণ এরা অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য নিপীড়ণের সব রেকর্ড ভেঙে বিশ্বমানবতার শত্রু হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এদের নিরাপত্তা বাহিনীর অত্যাচার ও উৎপীড়নের কাহিনী আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে।' তিনি বলেন, 'যেহেতু জনসমর্থনহীন সরকার জবাবদিহিতার ধার ধারে না, সেহেতু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিনদিন বেপরোয়া ও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। এরা এমন একটি দুর্নীতির সংস্কৃতি তৈরি করেছে, যার মাধ্যমে তারা কল্পস্বর্গ বানিয়ে আনন্দে আত্মহারা। আর এদিকে সাধারণ মানুষ ক্ষুধা, দারিদ্র আর অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।'
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এবার যে নির্বাচনের নামে ভোট ডাকাতি হয়েছে, আওয়ামী লীগের পরাজিত নেতারা তা নিজেরাই সংবাদ সম্মেলন করে তুলে ধরছেন।
নতুন সরকারের সামনে রাজনৈতিক-কূটনৈতিক-অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ: ওবায়দুল কাদের
নতুন সরকারের সামনে তিনটি চ্যালেঞ্জ আছে বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন। আজ শুক্রবার ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে নতুন মন্ত্রিপরিষদের শ্রদ্ধা নিবেদনের আগে গণমাধ্যমকে তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, চ্যালেঞ্জ আসলে, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক। সামনে এই তিনটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। নতুন সরকারের প্রস্তুতি কী-জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আমরা মন্ত্রিপরিষদ বৈঠক করব, যার যার দপ্তরে কাজ করব। বিশেষ করে আমাদের ইশতেহার, সেই ইশতেহার বাস্তবায়নই আমাদের মূল টার্গেট। তিনি বলেন, তবে আমাদের একটা বিশ্বাস আছে, আজ যে এই সংকট অতিক্রম করে একটা শান্তিপূর্ণ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পেরেছি, এটা জননেত্রী শেখ হাসিনার ম্যাজিক লিডারশিপের জন্য সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি যে দক্ষতা দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন এবং সংকটে রূপকের ভূমিকা পালন করেছেন, সে কারণেই মূলত আমরা সাহস রাখি, আশা রাখি। তিনি আমাদের আশার বাতিঘর, আমাদের স্বপ্নের সাহসী ঠিকানা। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমার বিশ্বাস শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্ব যে দেশে আছে, সে দেশ এগিয়ে যাবে। স্মার্ট বাংলাদেশ আমাদের লক্ষ্য। তিনি বলেন, 'আমাদের দেশের চলার পথ কখনো পুষ্প বিছানো ছিল না, আমাদের চলার পথ জন্ম থেকে এ পর্যন্ত কণ্টকাকীর্ণই ছিল। কাজেই এই পথ আমরা অতিক্রম করে, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি, এখন বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে মুক্তির কঠিন লড়াই অতিক্রম করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলব।'
নতুন সরকারের সামনে তিনটি চ্যালেঞ্জ আছে বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন।
কাজী ফিরোজ ও সুনীল শুভরায়কে জাপা থেকে অব্যাহতি
জাতীয় পার্টির (জাপা) কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ ও প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়কে দলের সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুরে জাপা যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের দলীয় গঠনতন্ত্রে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কাজী ফিরোজ রশিদকে কো-চেয়ারম্যান ও সুনীল শুভরায়কে প্রেসিডিয়াম সদস্য পদসহ দলীয় সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন, যা ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে।
জাতীয় পার্টির (জাপা) কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ ও প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়কে দলের সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
সরকারের কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের মাত্রা আরো বাড়বে: বামজোট
ভোটাধিকার-গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও জনজীবনের সংকট দূর করতে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সংগ্রাম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। বৃহস্পতিবার জোটের সভায় বলা হয়, বিরোধী সব রাজনৈতিক দল ও অধিকাংশ জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে সরকার একতরফা প্রহসনের নির্বাচন করে বছরের শুরুতেই যে ন্যাক্কারজনক অধ্যায় শুরু করল, তা দেশের গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর চরম আঘাত হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।  এই অবস্থা বহাল থাকলে সরকারের কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের মাত্রা আরও বাড়বে বলে মনে করে বামজোট। তারা বলছে, রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়িত ধারা, মূল্যবৃদ্ধির সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য, দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থপাচার বাড়বে, যা দেশের সাধারণ মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলবে। একইসঙ্গে জনসমর্থনহীন সরকারের কারণে বিদেশি সাম্রাজ্যবাদী-আধিপত্যবাদী শক্তি নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নিতে সক্রিয় হবে। 'দেশের অধিকাংশ মানুষ বর্জন করেছে' উল্লেখ করে সভায় বলা হয়, এ নির্বাচন সম্পর্কে সরকার ও নির্বাচন কমিশন দিয়ে যে তথ্য উপস্থাপন করেছে, তার বিপরীতে হেরে যাওয়া নৌকা, স্বতন্ত্র এবং জাতীয় পার্টি, ১৪ দল ও সরকার সমর্থিত পার্টিসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীদের দেওয়া যেসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে তা শুধু নির্বাচনী প্রহসন নয়, এতে পুরো নির্বাচন ব্যবস্থার সংকট উন্মোচিত হয়েছে। এ অবস্থায় এই 'আমি-ডামি' নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের কোনো নৈতিক অধিকার কারও নেই বলে সভায় উল্লেখ করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবির কার্যালয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জোটের সমন্বয়ক কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ। সভায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মো. শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের আব্দুস সাত্তার, বাসদ মার্কসবাদীর কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা রুবেল শিকদার, সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বাসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহিদুল ইসলাম সবুজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভায় নিত্যপণ্যের লাগাতার মূল্যবৃদ্ধি, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে চলমান রাজনৈতিক সংকট দূর করা ও অনিবার্য অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করতে অবিলম্বে ভুয়া ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নিয়ে সরকার গঠন না করে পদত্যাগ করে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। এসব দাবিতে সব বাম প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল ও শ্রেণী-পেশার গণসংগঠনের ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়। আগামী ১৭ জানুয়ারি ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত বক্তব্য ও করণীয় তুলে ধরবে বাম গণতান্ত্রিক জোট। ওই সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচিও ঘোষণা করা হবে। এছাড়া, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স আগামী তিন মাসের জন্য বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়।
ভোটাধিকার-গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও জনজীবনের সংকট দূর করতে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সংগ্রাম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
৫ মাস পর হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঁচ মাসের বেশি সময় চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আজ বিকেল ৫টায় তিনি হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসার উদ্দেশে রওনা দেন এবং ৬টা ৫০ মিনিটে বাসায় পৌঁছান। বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন চেয়ারপারসনের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান। খালেদা জিয়ার চিকিৎসক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেনের বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, মেডিকেল বোর্ড আজ থেকে খালেদা জিয়াকে তার গুলশানের বাসায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত বছরের ৯ আগস্ট হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গত ২৫ অক্টোবর মার্কিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল ঢাকায় আসে। উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে তার পরিবারের সদস্যরা সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে আসছেন। খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন। কারাদণ্ড পাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসনকে ২০২০ সালে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঁচ মাসের বেশি সময় চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
৭৫ দিন পর তালা ভেঙে বিএনপি কার্যালয়ে নেতাকর্মীরা
রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘিরে ৭৫ দিন তালাবদ্ধ থাকার পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপির নেতাকর্মীরা তালা ভেঙে কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, গত বছরের ২৮ অক্টোবর নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের পর এই প্রথম নেতাকর্মীরা তাদের অফিসে প্রবেশ করতে পেরেছে। আজ বিকেল তিনটায় এই কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, দলীয় কার্যালয়ের সামনে প্রায় দুই ডজন নেতাকর্মী দাঁড়িয়ে আছেন। রিজভীসহ দলের অন্যান্য নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের ভেতরে আছেন। গত বছরের ২৮ অক্টোবর থেকে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে রাখা হয়।
রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘিরে ৭৫ দিন তালাবদ্ধ থাকার পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকেছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টের পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ নৌকা সমর্থকদের বিরুদ্ধে
শরীয়তপুর-২ আসনে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টের পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নৌকা সমর্থকদের বিরুদ্ধে। বুধবার সকালে নড়িয়া উপজেলার পশ্চিম লোনসিং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত গনি সিকদারকে (৫৫) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই এই ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর ভাই বাদী হয়ে ৬ জনের নামে মামলা করেছেন। এরই মধ্যে পুলিশ দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান রাত ৮টার দিকে ডেইলি স্টারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ জমি সংক্রান্ত বিরোধ থেকে হামলার কথা দাবি করলেও ভুক্তভোগীর জামাতা এ ধরনের কোনো বিরোধ থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। অভিযোগের বরাত দিয়ে ওসি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আজ সকালে গনি সিকদার গরু কেনার জন্য ২ লাখ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। সকাল ৮টার দিকে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দুরে নড়িয়া পৌরসভার পশ্চিম লোনসিং এলাকায় পৌঁছালে আব্দুল আলী সিকদার ও তার ছেলে আশিক সিকদার এবং মোরশেদ সিকদারসহ কয়েকজন তাকে মারধর করেন। তারা হাতুড়ি ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে তার ডান পা ভেঙে দেন। তিনি বলেন, মূলত জমি নিয়ে পূর্ব শত্রুতা জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী গনি সিকদার স্বতন্ত্র প্রার্থীর এবং হামলাকারীরা নৌকার সমর্থক। তারা পরস্পরের চাচাতো ভাই। আর এখন নির্বাচন শেষ। এসব ঘটনা নিয়েই কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে এই ঘটনা ঘটে। আলিম সিকদার ও মিলন মাদবর নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে গনি সিকদারের জামাতা বাদল মৃধা দ্য ডেইলি স্টারকে বলে, আমার শ্বশুর নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর হয়ে কাজ করেছেন। পাশাপাশি তিনি নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী পরাজয় এবং নৌকার জয় হয়েছে। এই কারণেই আমার শ্বশুরকে একা পেয়ে মারধর করেছে তারা। আর জমি জমা নিয়ে আমার শ্বশুরের সাথে তাদের কোন ঝামেলায় ছিল না। সব সময় তাদের ভেতর একটা ভালো সম্পর্ক ছিল। অভিযোগের বিষয়ে নৌকার প্রার্থীর নির্বাচন সমন্বয়ক ও নড়িয়া পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনের নিয়ে যাতে সহিংসতা না ঘটে সেই বার্তা দলীয় নেতাকর্মীদের দেওয়া হয়েছে। ব্যক্তিগত ও গোষ্ঠীগত বিরোধ থেকে হামলার ঘটনা ঘটতে পারে। যারা ওই ঘটনা ঘটিয়েছেন তারা আমাদের দলের (নৌকার) কেউ নন। এ বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী খালেদ শওকত আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, আমার এক সমর্থকের পা ভেঙে দিয়েছে নৌকার সমর্থকরা। ভুক্তভোগী গনি সিকদার নির্বাচনে আমার এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছিল। আমি হেরে যাওয়ায় ক্ষমতার দম্ভে নৌকার লোকজন তাকে মারধর করেছে। আমি প্রশাসনের কাছে হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করছি।
শরীয়তপুর-২ আসনে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টের পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নৌকা সমর্থকদের বিরুদ্ধে। বুধবার সকালে নড়িয়া উপজেলার পশ্চিম লোনসিং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
৯ মামলায় মির্জা ফখরুলের জামিন
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় রাজধানী দুই থানায় করা নয় মামলায় জামিন পেয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম সুলতান সোহাগ উদ্দীন আজ বুধবার বিকেলে এ আদেশ দেন। অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় রাজধানী দুই থানায় করা নয় মামলায় জামিন পেয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
খেলা শেষ, বিএনপি ভুয়া দল: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খেলা শেষ। বিএনপি একটা ভুয়া দল। তাদের আন্দোলন ভুয়া, কর্মসূচি ভুয়া, একদফা ভুয়া। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত জনসভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, 'খেলা শেষ হয়ে গেছে ৭ জানুয়ারি। বিএনপি ভুয়া দল। ওদের কর্মসূচি ভুয়া। ওদের নেতা ভুয়া। তাদের একদফা ভুয়া। তাদের ভবিষ্যৎ ভুয়া। তাদের ভবিষ্যৎ শুধু অন্ধকার।' আরওনির্বাচনে জয়ের পর প্রথম জনসভায় আওয়ামী লীগ গত ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ের পর এটিই আওয়ামী লীগের প্রথম জনসভা। সমাবেশে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত আছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আজ ঐতিহাসিক ১০ই জানুয়ারি। এই দিনে মনে পড়ে আমাদের ইতিহাসের মহানায়ক মহাবীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যে মহামানবের আজন্ম সাধনার মহামূল্যবান কীর্তি আজকের এই স্বাধীন বাংলাদেশ।' গত ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ের পর এটিই আওয়ামী লীগের প্রথম জনসভা। সমাবেশে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত আছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আজ ঐতিহাসিক ১০ই জানুয়ারি। এই দিনে মনে পড়ে আমাদের ইতিহাসের মহানায়ক মহাবীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যে মহামানবের আজন্ম সাধনার মহামূল্যবান কীর্তি আজকের এই স্বাধীন বাংলাদেশ।'
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খেলা শেষ। বিএনপি একটা ভুয়া দল। তাদের আন্দোলন ভুয়া, কর্মসূচি ভুয়া, একদফা ভুয়া।
জাপায় নেতৃত্বের পরিবর্তন চান দলের অতিরিক্ত মহাসচিব
নেতৃত্বের ব্যর্থতার কারণে জাতীয় পার্টি 'কোরবানির' পথে মন্তব্য করে দলটির অতিরিক্ত মহাসচিব সাহিদুর রহমান (টেপা) নেতৃত্বের পরিবর্তন দাবি করেছেন। আজ বুধবার রাজধানী ঢাকার বনানীতে দলটির কার্যালয়ের সামনে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় আরও অনেক নেতাকর্মী সেখানে জড়ো হয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। সাহিদুর রহমান বলেন, 'আমরা নির্বাচনমুখী দল। আমরা নির্বাচন করেছি, নির্বাচনে যারা জয়লাভ করেছেন তারা শপথ নেবেন এটা স্বাভাবিক কথা। আমাদের বাধা দেওয়ার কিছু নেই। আমাদের আজকে এখানে আসার একটাই কারণ যে, ২৮৭টি সিটে আমরা নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন বিক্রি করেছি। তারা দাঁড়িয়েছিলেন কিন্তু ২৮৭ জনের মধ্যে সবাই প্রায় নির্বাচন বর্জন ঘোষণা করেছেন। সমঝোতার ভিত্তিতে যে ২৬টি আসন তারা নিয়েছে এটা আমরা জানি না। না জানার কারণে যারা নির্বাচন করেছেন, তারা নির্বাচনে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেননি।' তিনি অভিযোগ করেন, 'জাপা চেয়ারম্যান ও মহাসচিব কোনো প্রার্থীর ফোন রিসিভ করেননি। কোথাও গিয়ে উনারা কথা বলেননি। আর্থিক সহযোগিতা পর্যন্ত দেননি। আমাদের ফান্ড নেই, সেটা ঠিক আছে কিন্তু পাঁচ কোটি ৪০ লাখ টাকা আমরা মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে দিয়েছি, আমাদের নেতাকর্মীদের ২০ লাখ টাকা করে দিয়ে দিলে তারা হয়তো মাঠে থাকতেন।' জাপা অতিরিক্ত মহাসচিবের মত, 'জাতীয় পার্টি সমঝোতায় না গিয়ে ২৮৭ আসনে নির্বাচন করলে সারা দেশে উজ্জীবিত থাকত। জাতীয় পার্টি এখন কোরবানির পথে। এখন মৃত মানুষ হিসেবে জাতীয় পার্টির আবির্ভাব হচ্ছে। জাতীয় পার্টি নেতাকর্মীরা সারা বাংলাদেশে বিক্ষুব্ধ। আমাদের চেয়ারম্যান ও মহাসচিবসহ যারা সমঝোতা করেছেন; আমাদের দায়িত্ব, আমরা তাদের জিজ্ঞাসা করব ২৮৭টি আসনে আমাদের কেন কোরবানি দেওয়া হলো? জাতীয় পার্টি তো কারও পৈত্রিক সম্পত্তি না!' তিনি বলেন, 'জাতীয় পার্টি আমাদের দ্বারা এরশাদ সাহেবের তৈরি করা পার্টি। আমরা দীর্ঘ বছর ধরে দলটি করি। এই দলের পেছনে শ্রম-মেধা ব্যয় করি। আমরা প্রতি মাসে চাঁদা দেই। চাঁদা দিয়ে দল পরিচালনা করি।' নেতৃত্বের পরিবর্তন চান জানিয়ে সাহিদুর রহমান বলেন, 'এই নেতৃত্ব দিয়ে জাতীয় পার্টি আর চলতে পারে না। নেতৃত্বের ব্যর্থতার কারণে আজকে আমাদের এই অবস্থা। আমরা এই নেতৃত্বের পরিবর্তন চাওয়ার জন্য এসেছি। আমরা চেয়ারম্যান বানাব। কাউন্সিলের মাধ্যমে আমরা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছিলাম, আমরা এর পরিবর্তন চাই।' নেতৃত্বের সমস্যার জন্য জাতীয় পার্টি আজকে কোরবানির পথে বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।
নেতৃত্বের ব্যর্থতার কারণে জাতীয় পার্টি 'কোরবানির' পথে মন্তব্য করে দলটির অতিরিক্ত মহাসচিব সাহিদুর রহমান (টেপা) নেতৃত্বের পরিবর্তন দাবি করেছেন।
নির্বাচনে জয়ের পর প্রথম জনসভায় আওয়ামী লীগ
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জনসভা শুরু হয়েছে। আজ বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে দলের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে জনসভা শুরু হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। গত ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ের পর এটিই আওয়ামী লীগের প্রথম জনসভা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের ভিড়। ছবি: পলাশ খান/স্টার এই কর্মসূচির কারণে সমাবেশস্থল সংলগ্ন সড়কে যানজট দেখা দিয়েছে বলে আমাদের প্রতিবেদক জানিয়েছেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিছু সময় পরে তিনি যোগ দেবেন। দুপুর থেকেই প্ল্যাকার্ড হাতে এবং দলীয় স্লোগান দিয়ে উচ্ছ্বসিত নেতাকর্মীরা ছোট ছোট দলে সমাবেশস্থলের দিকে জড়ো হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী রাসেল আহমেদ বলেন, 'এবার দ্বিগুণ উদযাপন হবে। একটি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদযাপন অন্যটি আওয়ামী লীগের নির্বাচনে জয়লাভের বিজয় উদযাপন। সমাবেশস্থলের আশেপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ছবি: পলাশ খান/স্টার দুপুর ১টা থেকেই ঢাকা ও আশেপাশের জেলা থেকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে জড়ো হতে শুরু করেন। জনসভা চলাকালে নিরাপত্তা রক্ষার্থে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও সংলগ্ন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, জনসভা উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকায় অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের যাওয়া আসা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু রাস্তা বন্ধ বা ডাইভারশন দেওয়া হবে। সম্ভাব্য ডাইভারশন পয়েন্টগুলো হচ্ছে- কাঁটাবন ক্রসিং, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ক্রসিং, মৎস্য ভবন ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার, জগন্নাথ হল ক্রসিং, ভাস্কর্য ক্রসিং ও ভিসি বাংলো ক্রসিং। এই সময় চলাচলের জন্য নগরবাসীকে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করার অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপি। এই কর্মসূচির কারণে সমাবেশস্থল সংলগ্ন সড়কে যানজট দেখা দিয়েছে বলে আমাদের প্রতিবেদক জানিয়েছেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিছু সময় পরে তিনি যোগ দেবেন। দুপুর থেকেই প্ল্যাকার্ড হাতে এবং দলীয় স্লোগান দিয়ে উচ্ছ্বসিত নেতাকর্মীরা ছোট ছোট দলে সমাবেশস্থলের দিকে জড়ো হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী রাসেল আহমেদ বলেন, 'এবার দ্বিগুণ উদযাপন হবে। একটি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদযাপন অন্যটি আওয়ামী লীগের নির্বাচনে জয়লাভের বিজয় উদযাপন। দুপুর ১টা থেকেই ঢাকা ও আশেপাশের জেলা থেকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে জড়ো হতে শুরু করেন। জনসভা চলাকালে নিরাপত্তা রক্ষার্থে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও সংলগ্ন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, জনসভা উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকায় অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের যাওয়া আসা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু রাস্তা বন্ধ বা ডাইভারশন দেওয়া হবে। সম্ভাব্য ডাইভারশন পয়েন্টগুলো হচ্ছে- কাঁটাবন ক্রসিং, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ক্রসিং, মৎস্য ভবন ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার, জগন্নাথ হল ক্রসিং, ভাস্কর্য ক্রসিং ও ভিসি বাংলো ক্রসিং। এই সময় চলাচলের জন্য নগরবাসীকে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করার অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপি।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জনসভা শুরু হয়েছে। আজ বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে দলের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে জনসভা শুরু হয়।
নির্বাচনে সব দলের অংশ না নেওয়া দুঃখজনক: অস্ট্রেলিয়া
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দল ও অংশীজনদের অংশ না নেওয়ার বিষয়টিকে দুঃখজনক হিসেবে অভিহিত করেছে অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার ডিপার্টমেন্ট অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ট্রেড আজ বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছে, 'নির্বাচনে লাখ লাখ বাংলাদেশি ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার বিষয়টিকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু দুঃখজনক যে নির্বাচন এমন একটি পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে যেখানে সব অংশীজনরা অর্থবহ ও উল্লেখযোগ্যভাবে অংশ নিতে পারেনি।' বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু হিসেবে অস্ট্রেলিয়া নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সহিংসতা ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যদের গ্রেপ্তারে উদ্বিগ্ন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের গুরুত্ব অস্ট্রেলিয়া ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের কাছে তুলে ধরেছে।' বিবৃতিতে অস্ট্রেলিয়া সরকার বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষা, আইনের শাসন ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, 'একটি উন্মুক্ত, স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অঞ্চলের জন্য আমাদের অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে ঘনিষ্ঠ অংশীদার হিসেবে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।'
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দল ও অংশীজনদের অংশ না নেওয়ার বিষয়টিকে দুঃখজনক হিসেবে অভিহিত করেছে অস্ট্রেলিয়া।
সরকারের সমালোচনা করতে গ্রুপ লাগে না, আমরা একাই করতে পারি: চুন্নু
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১১টি আসন পাওয়া জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, সরকারের সমালোচনা করতে গ্রুপ লাগে না, আমরা একাই করতে পারি। সমন্বিত বিরোধী দল হলেও জাতীয় পার্টি শক্তিশালী বিরোধী দলের দায়িত্ব পালন করতে পারবে কি না—গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। আজ বুধবার সকালে সংসদ ভবনে নবনির্বাচিত এমপিদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন চুন্নু। বিরোধী দল নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি জানিয়ে জাপা মহাসচিব বলেন, 'আমরা আবারও বসবো, তখন একটা পরিষ্কার ধারণা আমরা আপনাদের দিতে পারব।' আপনাদের দলের নেতারা অভিযোগ করছেন, এই সংসদে যদি আপনারা যোগ দেন তাহলে জাতীয় পার্টির কবর রচনা হবে। কার্যালয় দখলের কথাও বলেছেন তারা—এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'দলের মধ্যে অনেক পথের মুরিদ থাকে। নির্বাচনে অনেক প্রার্থী ছিলেন, প্রশাসনের কোনো সহযোগিতা পাননি। টাকার দৌরাত্ম্যর কারণে আমাদের প্রার্থীরা টিকতে পারেনি। এসব কারণে তাদের মধ্যে ক্ষোভ আছে। কাজেই বলতেই পারেন, বলাটা অস্বাভাবিক কিছু না।' এর আগে দুই সংসদে আপনারা বিরোধী দল ছিলেন। আপনাদের আসন সংখ্যা ছিল ২৫ এর উপরে, এবার আপনাদের আসন সংখ্যা ১১, যদি সমন্বিত বিরোধী দলও হয়, আপনারা কি শক্তিশালী বিরোধী দলের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন—গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'সরকারের সমালোচনা, ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দেওয়া, এর জন্য গ্রুপ লাগে না। আমরা একাই করতে পারি। গত সংসদেও আমি একা অনেক কথা বলেছি, এবারও করব। এতে তো কোনো বাধা নেই! বিরোধী দলের গ্রুপ থাকলেই যে কথা বলা যাবে তা তো না। এটা হচ্ছে ইচ্ছা ও দায়িত্ব বোধ।' জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দল হতে চায় কি না জানতে চাইলে চুন্নু বলেন, 'এটা একটা টেকনিক্যাল বিষয়, বিরোধী দল হতে গেলে কার্যবিধি অনুযায়ী ২৫ জন এমপির বিষয় আছে। যেহেতু আমাদের ২৫ জন নেই, সেখানে আমরা হবো—হতেই পারব এমন কোনো কথা নেই, তবে কথা চলছে।'
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১১টি আসন পাওয়া জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, সরকারের সমালোচনা করতে গ্রুপ লাগে না, আমরা একাই করতে পারি।
শেষ হয়েছে মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি
গত ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় করা নয়টি মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে। আদেশ আজ পরে জানানো হবে। ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম সুলতান সোহাগ উদ্দীনের আদালতে আজ বুধবার দুপুরে শুনানি শুরু হয়। গতকাল এসব মামলায় একই আদালতে মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় বলে জানান মির্জা ফখরুলের আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান। মামলাগুলোর মধ্যে ছয়টি পল্টন ও তিনটি রমনা থানায় দায়ের করা। মামলার আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গত ২৯ অক্টোবর রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় ফখরুলকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকে বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা কারাগারে বন্দি। গত ২২ নভেম্বর ঢাকার একটি আদালত এ মামলায় তাকে জামিন নামঞ্জুর করেন। গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতার সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুর করা হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল বিএনপি।
গত ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় করা নয়টি মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে। আদেশ আজ পরে জানানো হবে।
নেত্রীই সিদ্ধান্ত দেবেন কে কোন পজিশনে থাকব: স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ দেবনাথ
স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আওয়ামী লীগ সভাপতির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল ৪ আসন (মেহেন্দীগঞ্জ-হিজলা) থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ। আজ বুধবার সকালে সংসদ ভবনে নবনির্বাচিত এমপিদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। পঙ্কজ দেবনাথ বলেন, 'স্বতন্ত্র কী রাজনৈতিক দলের প্রতীক সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা হচ্ছে—স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষার এই নির্বাচনী যুদ্ধে আমরা অংশগ্রহণ করেছি দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে। দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে সেটি দায়িত্ব ছিল, সংবিধান রক্ষার এই নির্বাচনে আমরা একজন সৈনিক। আমাদের দলের, দেশের, সংসদের অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। 'তিনি সংসদ পরিচালনার স্বার্থে আমাদেরকে যে নির্দেশ দেবেন; কারণ আমরা আওয়ামী লীগের অনুমোদিত স্বতন্ত্র প্রার্থী, দলের সিদ্ধান্ত ও নেত্রীর পরামর্শেই কিন্তু আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। কাজেই আমরা দায়িত্ব দেবো জননেত্রী শেখ হাসিনাকে, তিনি সিদ্ধান্ত দেবেন আমরা কে কোন পজিশনে থাকব,' বলেন তিনি। কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে স্বতন্ত্র এই এমপি বলেন, 'এখনো কোনো আলোচনা হয়নি। সরকার দলীয় যে সংসদীয় দলের বৈঠক চলছে, আমরা অপেক্ষায় আছি—নেত্রী কী সিদ্ধান্ত দেবেন।'
স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আওয়ামী লীগ সভাপতির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল ৪ আসন (মেহেন্দীগঞ্জ-হিজলা) থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ।
জনগণের ভোটে নয়, কারচুপির ভোটে পরাজিত হয়েছি: ইনু
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া ২ আসনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, তিনি জনগণের ভোটে নয়, কারচুপির ভোটে পরাজিত হয়েছেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, কেন্দ্রের দুএকজন নেতা সরাসরি নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। আজ মঙ্গলবার কুষ্টিয়ার মিরপুর এলাকায় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। ইনু বলেন, 'বিচ্ছিন্ন, বিক্ষিপ্ত, সাংঘর্ষিক কারচুপির ঘটনা ছাড়া সারা দেশে ভোট অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে—এই মতের সঙ্গে আমি একমত। দ্বিতীয়ত, আমি মনে করি বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্ত যে কারচুপি এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, তার ভেতরে দুর্ভাগ্যজনক হলেও কুষ্টিয়া ২ আসন; আমার এলাকা অন্তর্ভুক্ত। 'এখানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মাস্তান বাহিনী ভোটের সাত দিন আগে থেকে যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে সেটা বন্ধ করা সম্ভব হয়নি এবং ভোটের দিন ১৬১ কেন্দ্রের ভেতরে ১৮টি কেন্দ্রে অস্বাভাবিক ভোট প্রদান লক্ষ করা গেছে—যা কারচুপির মাধ্যমে করা হয়েছে। উপর্যপুরি প্রতিবার করার পরেও, কর্তৃপক্ষের নজরে আনার পরেও কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে,' বলেন তিনি। চৌদ্দ দলীয় জোট থেকে তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা এই নেতা বলেন, 'আমি মনে করি, কুষ্টিয়া ২ আসনে আমি জনগণের ভোটে নয়, কারচুপির ভোটে পরাজিত হয়েছি। আশা করি, এটা সবাই তদন্ত করে দেখবেন এবং এটার প্রতিকার ও বিহিত করবেন।' এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'নির্বাচনী ঘটনা নিয়ে জোটে রাজনৈতিক কোনো প্রভাব পড়বে না। জোটের রাজনৈতিক বিষয়ে আমরা ঐক্যমত্যে আছি। জোটের শরিকদের ভেতরে নির্বাচনী সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে যে বিভ্রান্তি-বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে সেটা অবশ্যই নিষ্পত্তি করতে হবে। একইসঙ্গে জোটের প্রার্থীর এলাকায় প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী স্বতন্ত্র প্রার্থীর গুণ্ডা বাহিনীর যে আক্রমণ-হুমকি-ধামকি-অত্যাচার শুরু হয়েছে, এটা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। তা না হলে জোটের অভ্যন্তরে সুষ্ঠু পরিবেশ থাকবে না।' গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমরা ঢাকায় যাই, জোটের বৈঠক হবে এবং জোটের প্রার্থী এলাকাতে; যেহেতু আমরা জোটের শরিক, এখানে আওয়ামী লীগ বনাম জোটের শরিক দলের সাংঘর্ষিক অবস্থা থাকা উচিত না। এটা নিষ্পত্তি হওয়া উচিত, বন্ধ করে দেওয়া উচিত। আশা করি এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।' জাসদ সভাপতি বলেন, 'জোটের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অনেক ক্ষেত্রে এবং সর্বক্ষেত্রেই আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব জোটের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করেছে; নৌকার বিরুদ্ধে—এটা আমরা নজরে আনব। এটা তাদের দলীয় বিশৃঙ্খলা, এটা সমাধান করার আহ্বান জানাব।' আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমার আসনে আমি সরাসরি বলতে চাই, আওয়ামী লীগ বেশিরভাগ নেতৃত্ব এখানে নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করেছে। এখানে কেন্দ্রের দুএকজন নেতা সরাসরি জড়িত এই মর্মে আমার কাছে অভিযোগ এসেছে।' প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাসানুল হক ইনু নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪৪৫ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুল আরেফিন ট্রাক প্রতীক নিয়ে এক লাখ ১৫ হাজার ৭৯৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া ২ আসনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, তিনি জনগণের ভোটে নয়, কারচুপির ভোটে পরাজিত হয়েছেন।
গণতন্ত্র-মানবাধিকার-ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন অব্যাহত থাকবে: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেছেন রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গণতন্ত্র-মানবাধিকার-ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় বিএনপির আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আজ মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় রিজভী বলেন, 'গত ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের ইতিহাসে জনগণের অভূতপূর্ব নীরব প্রতিবাদে একটি গণবর্জিত প্রহসনের প্রকাশ্য ভোট ডাকাতি দেখল দেশবাসীসহ গোটা বিশ্ব। 'ভয়-ভীতি, জেল-জুলুম নির্যাতন-প্রলোভন ও সরকারের চাপ উপেক্ষা করে ভোট না দিয়ে জনগণ নির্বাচনকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ১৮ কোটি মানুষের দাবি ও গণতান্ত্রিক বিশ্বের আহ্বান পরোয়া না করে পূর্বনির্ধারিত ফলাফলের একদলীয় একতরফা ভোটার বর্জিত ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে মূলত বিজয় হয়েছে স্বতঃস্ফূর্ত ভোট বর্জনকারী গণতন্ত্রকামী বীর জনতার।' '৭ জানুয়ারি একটি জঘন্য কালো দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে' মন্তব্য করে রিজভী বলেন, 'এই দিনে ভোট বর্জন করে দেশের সর্বস্তরের মানুষ আওয়ামী লীগকে লালকার্ড দেখিয়েছে। ৭ জানুয়ারি গভীর রাত থেকে চুরি-ডাকাতি, জালভোট, শিশু-কিশোর ভোট, রাস্তা থেকে পথিক ধরে নিয়ে ভোট, একই লাইন থেকে ঘুরেফিরে বারবার জাল ভোট দিয়েও বিকাল ৩টা পর্যন্ত ২৭ দশমিক ১৫ শতাংশ ভোটের ঘোষণা দেওয়া হয়।' 'গণভবনের চাপে আবার এক ঘণ্টা পর ৪০ শতাংশ এবং গতকাল দুপুরে তা আরেক দফা বাড়িয়ে ৪১ দশমিক ৯৯ শতাংশ ভোটের গোঁজামিলের ভৌতিক হিসাব বানানোর হাস্যকর নির্বাচন ভোটের ইতিহাসে কলঙ্ক দিল ডামি সরকার,' বলেন তিনি। রিজভী বলেন, 'জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ গণতান্ত্রিক বিশ্ব এই অংশগ্রহণহীন ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দিয়েছে। বিশ্বের সব মিডিয়া ও পর্যবেক্ষকরা এই নির্বাচনকে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা এবং জনগণ ও ভোটার সম্পর্কহীন পুরোপুরি "ওয়ান উইম্যান শো" ভোট বলে আখ্যায়িত করেছে।' 'দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ পাতানো ডামি নির্বাচনের ফাঁদে পা দেয়নি' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সারাদেশের ভোটকেন্দ্রগুলো ছিল ভোটারশূন্য। শেখ হাসিনার এই প্রহসনমূলক নির্বাচন দেশকে অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক রাজনীতিতে দীর্ঘস্থায়ী সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসা ব্রিটিশ পর্যবেক্ষক জেজ কৌলসন সাংবাদিকদের বলেছেন, আই ফাউন্ড দ্য নর্থ কোরিয়া মডেল হিয়ার। বাংলাদেশে উত্তর কোরিয়া স্টাইলের একদলীয় নির্বাচন হয়েছে।' '২০১৪ ও ২০১৮ সালের ভোট ডাকাতির নির্বাচনের পর আবারও অভিনব কায়দায় বিরোধী দলহীন, ভোটারবিহীন ভোট ডাকাতির একটি ডামি নির্বাচন করার জন্য গত ৫ বছর গণবিচ্ছিন্ন শেখ হাসিনা বিএনপিসহ বিরোধী দল ও ভিন্নমতের প্রতিটি মানুষের জীবন ধ্বংস করে দিয়েছে,' যোগ করেন তিনি। 'কারা হেফাজতে প্রতিদিন বিএনপির নেতাকর্মীদের কারো না কারো মৃত্যু সংবাদ আসছে' জানিয়ে এই সিনিয়র নেতা বলেন, 'আইন, আদালত, পুলিশ, সিভিল প্রশাসন সবকিছু দলীয়করণ করে সব মৌলিক অধিকার কবর দিয়ে ভয়ের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। লুটপাট করে দেশকে দেউলিয়া বানিয়েছে। সিন্ডিকেট করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আকাশচুম্বী করে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি তৈরি করেছে। দেশের জনগণকে ভোটহীন করে রিফিউজিতে পরিণত করেছে।' তিনি বলেন, 'ডামি নির্বাচনের ডামি প্রার্থীরা এখন ডামি পার্লামেন্টে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এদের কোনো বৈধতা নেই। এক মুহূর্তে ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই। এই অবৈধ সরকারকে জনগণ মানে না। আমি এই মুহূর্তে পাতানো গণবিরোধী ডামি নির্বাচন বাতিল করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় জনগণের চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলন আরও দুর্বার করে এই ডামি সরকারের পতন ঘটানো হবে।' রুহুল কবির রিজভী বলেন, 'ঘোষিত জয়-পরাজয় ও ভোটের দেখানো সংখ্যা নিয়ে বিশ্লেষণ করার বা আনন্দ-বেদনা প্রকাশের কিছু নেই। কাউকে কিঞ্চিৎ দেবে এবং কাউকে বঞ্চিত করবে, এই ধারার এক স্বেচ্ছাচারী একতরফা প্রহসনে শেখ হাসিনা কাউকে জিতিয়েছেন, কাউকে হারিয়েছেন। সবই ভেলকিবাজি ও তার মর্জির ফল। এর সঙ্গে জনগণ, ভোটার বা অন্য কারোর কোনো সম্পর্কই নেই।' 'সাধারণ মানুষের এই বর্জন বর্তমান "ডামিক্রেসি সরকার" ও শাসকগোষ্ঠীর প্রতি নীরব গণ-অনাস্থার সুস্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ। দৃশ্যমান এই অনাস্থা ক্ষমতাসীনদের ন্যূনতম বৈধতার ভিত্তি তাসের ঘরের মতো গুঁড়িয়ে দিয়েছে। ভোটার সংখ্যা বাড়ানোতে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে সরকার একটি স্বাধীন দেশের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত করেছে এবং প্রজাতন্ত্রের জনগণের ওপর কলঙ্ক লেপন করেছে,' বলেন তিনি। রিজভী আরও বলেন, 'নির্বাচনে সরকার ভয়াবহ অন্যায় করার পরও বিজয়ের গৌরব উদযাপন করছে, আত্মগরিমা প্রকাশ করছে যা সরকারের অধঃপতিত মনোবৃত্তির প্রকাশ। ক্ষমতা ধরে রাখার উপায় হিসেবে ব্যবহার করতে নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করা এবং ভোটার অংশগ্রহণকে বাড়িয়ে দেখানোই স্বৈরাচারের অপকৌশল। বিশ্বের সব স্বৈরশাসকই জনগণের সম্মতি ও সমর্থনের প্রয়োজনীয়তা উপেক্ষা করে নির্বাচনে জালিয়াতির আশ্রয় নেয়। বর্তমান সরকারও তার ব্যতিক্রম নয় বরং অন্যতম দৃষ্টান্ত।' 'ভোট ডাকাত সরকার ভোট প্রদানের শতকরা হার যতই বাড়িয়ে বলুক, এটা এখন জনগণের কাছে হাস্যকর হয়ে গেছে,' যোগ করেন তিনি। রিজভী বলেন, 'দুর্নীতিবাজ "ডামি সরকার" দিয়ে দেশ চলতে পারে না। চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং ১২ কোটি কোটি মানুষের লুণ্ঠিত ভোটাধিকার পুনর্প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আপনি যে দল কিংবা যে মতের হোন, আমাদের আন্দোলনকে বেগবান করতে আমাদের হাতকে শক্তিশালী করুন। আমাদের সঙ্গে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিন। আপনার সাধ্য ও সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে বিএনপিসহ ৬৩টি রাজনৈতিক দলের চলমান আন্দোলনের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন।'
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেছেন রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গণতন্ত্র-মানবাধিকার-ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় বিএনপির আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
বিদেশে আছে, মারা গেছে—তাদের ভোটও দেওয়া হয়েছে: মমতাজ
মানিকগঞ্জ-২ আসনের পরাজিত নৌকার প্রার্থী মমতাজ বেগম নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেছেন, ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর লোকজন অনিয়মে জড়িত ছিলেন। এ কারণে তার পরাজয় হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার পূর্বভাকুম এলাকায় নিজের বাড়ির উঠানে কর্মীসভায় এসব কথা বলেন মমতাজ। তিনি বলেন, 'সিংগাইর উপজেলার বলধরা, বায়রা ইউনিয়ন ও সিংগাইর পৌরসভার ভোটকেন্দ্রগুলোতে অস্বাভাবিক ভোট পড়েছে। বিদেশে আছে, মারা গেছে—তাদের ভোটও দেওয়া হয়েছে। আমি অন্য জায়গায় পাস করলেও, এসব এলাকায় অস্বাভাবিক ভোট হওয়ায় পরাজিত হয়েছি।' তিনি আরও বলেন, 'আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু কালো টাকা ছড়িয়ে বিএনপি-জামাতের ভোট কিনে এমপি হয়েছেন। নির্বাচনের রাত থেকে তার লোকজন আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীর বাড়িতে হামলা করেছে। প্রতিনিয়ত আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা করছে, ককটেল ফাটাচ্ছে। তাদের হাত থেকে নারীরাও রেহাই পাচ্ছে না। অকথ্য ভাষায় গালাগালি করছে। তারা সিংগাইর পৌরসভার কাউন্সিলর সোহেল, তার স্ত্রী ও মেয়ের ওপর হামলা করেছে। চান্দহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের মুরগির খামারে আগুন দিয়েছে। জয়মন্টপ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসলামকে তারা মারধর করেছে। সে কোনোরকমে জীবন নিয়ে পালিয়েছে।' নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ সম্পর্কে মমতাজ বলেন, 'সিংগাইরের চান্দহর, জামির্তা, তালেবপুর, জামশা, সিংগাইর পৌরসভা, হরিরামপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর, বয়রা, বলধরা এবং মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আমাদের অন্তত ৫০ জন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আমরা থানার ওসি ও এসপি সাহেবকে জানিয়েছি। ডিএমপি কমিশনারকে জানিয়েছি। থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। এর পরও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।' তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, 'আপনাদের কারও ওপর হামলা হলে, আঘাত করলে আমাদের জানাবেন। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হলে আমরাও বসে থাকব না। তবে, আপনারা আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। আপনাদের কারও ওপর হামলা হলে আমরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সম্মিলিতভাবে আপনাদের পাশে দাঁড়াব। ভয় পাবেন না।' কর্মীসভায় আরও বক্তব্য রাখেন পরাজিত কেটলী প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী, সিংগাইর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ নেতা মুশফিকুর রহমান খান হান্নান, সিংগাইর পৌরসভার মেয়র আবু নাঈম মো. বাশার, সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমানসহ হামলার শিকার নেতাকর্মীরা। মমতাজ বেগমের অভিযোগের ব্যাপারে পুলিশের বক্তব্য জানতে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খানকে বেশ কয়েকবার কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি। অভিযোগের বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার রেহেনা আক্তার বলেন, 'তিনি আমাদের কাছে এই অভিযোগ দেননি। তিনি এখনও লিখত অভিযোগ দিতে পারেন। অভিযোগ পেলে আমরা বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।'
মানিকগঞ্জ-২ আসনের পরাজিত নৌকার প্রার্থী মমতাজ বেগম নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেছেন, ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর লোকজন অনিয়মে জড়িত ছিলেন। এ কারণে তার পরাজয় হয়েছে।
ঝিনাইদহে আ. লীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা
ঝিনাইদহ শহরে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে শহরের হামদহ এলাকার ঘোষপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত বরুণ ঘোষ (৪২) শহরের ঘোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয়রা জানায়, বরুণ আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। সদ্য সমাপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-২ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন তিনি। নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বরুণকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারনা স্থানীয়দের। ঝিনাইদহ-২ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন তাহজীব আলম সিদ্দিকী। তাকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসের শাহরিয়ার আলম জাহেদী। তাহজীব সিদ্দিকী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নির্বাচনের সময় বরুণ নৌকার পক্ষে কাজ করেছে। চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।' ওসি শাহীন উদ্দিন বলেন, 'ঘোষপাড়া এলাকায় বরুণকে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তবে কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব না।' নৌকা প্রার্থী তাহজীব আলম সিদ্দিকী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসের শাহরিয়ার আলম জাহেদী। স্বতন্ত্র প্রার্থী এই ভোটে জয়লাভ করেন।
ঝিনাইদহ শহরে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আ. লীগের জনসভা, কাল বন্ধ থাকবে যেসব রাস্তা
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আগামীকাল বুধবার দুপুর আড়াইটায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করবে আওয়ামী লীগ। জনসভা উপলক্ষে রাজধানীর বেশকিছু এলাকার সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। আজ মঙ্গলবার ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জনসভা উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকায় অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের যাওয়া আসা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু রাস্তা বন্ধ বা ডাইভারশন দেওয়া হবে। সম্ভাব্য ডাইভারশন পয়েন্টগুলো হচ্ছে- কাঁটাবন ক্রসিং, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ক্রসিং, মৎস্য ভবন ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার, জগন্নাথ হল ক্রসিং, ভাস্কর্য ক্রসিং ও ভিসি বাংলো ক্রসিং। এই সময় চলাচলের জন্য নগরবাসীকে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করার অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপি। জনসভায় আসা গাড়ি কোন কোন জায়গায় পার্ক করা যাবে তারও একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হল মাঠ (ভিআইপি), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মলচত্বর, পলাশী ক্রসিং হতে ভাস্কর্য ক্রসিং পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে, ফুলার রোড রাস্তার দুই পাশে, দোয়েল চত্বর ক্রসিং হতে শহীদুল্লাহ হল ক্রসিং পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে, নবাব আব্দুল গণি রোডের দুই পাশে এবং দিলকুশা ও মতিঝিল এলাকার রাস্তার দুই পাশে গাড়ি রাখা যাবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আগামীকাল বুধবার দুপুর আড়াইটায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করবে আওয়ামী লীগ।
রাজনীতিতে টিকে থাকতে প্রভুদের পরামর্শে কাজ হবে না: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বিদেশি প্রভুদের পরামর্শ মেনে চললে বাংলাদেশের রাজনীতিতে কেউ টিকে থাকতে পারবে না। তিনি বলেন, 'বিএনপি জাতীয় নির্বাচন বানচাল করতে নেমেছিল। তাদের কিছু (বিদেশি) প্রভু আছে। তারা বাংলাদেশের জনগণকে চেনে না। প্রভুদের পরামর্শে বাংলাদেশে টিকে থাকা সম্ভব হবে না।' জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ে আজ মঙ্গলবার শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানাতে গণভবনে দলটির নেতাকর্মীরা জড়ো হলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এই বিজয়ে শেখ হাসিনার টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথ সুগম হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা তার বড় বোন শেখ হাসিনাকে ফুলের তোড়া উপহার দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণই আওয়ামী লীগের শক্তি। তাই দলটির কোনো বিদেশি প্রভু নেই। শেখ হাসিনা আরও বলেন, 'আমাদের কোনো (বিদেশি) প্রভু নেই। বাংলাদেশের জনগণই আমাদের প্রভু ও শক্তি। জনগণের বিশ্বাস ও আস্থাই আমাদের শক্তি।' তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করতে বিএনপি-জামায়াত চক্রের ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। চমৎকার এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, '৭ জানুয়ারির নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।' প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৭৫ পরবর্তী নির্বাচনের মধ্যে সদ্য অনুষ্ঠিত এই ৭ জানুয়ারির নির্বাচন ছিল সম্পূর্ণ অবাধ, সুষ্ঠু, সুশৃঙ্খল, অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক। তিনি বলেন, আমরা প্রমাণ করেছি যে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ সময় দেশ ও জনগণের কল্যাণে সবকিছু ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে তারা ভোটের দ্বার উন্মোচন করেছেন। শেখ হাসিনা আরও বলেন, দল মনোনীত অনেক প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে পরাজিত হয়েছেন, যদিও তারা মনে করেছিলেন তারা জয়ী হবেন। দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভেদের ফায়দা লোটার জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'জনগণের ম্যান্ডেটকে সম্মান দেখিয়ে, সবকিছু ভুলে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করুন।' প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে নারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের প্রশংসা করে বলেন, এটি নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার ফলাফল। এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, তার টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া আসনে ১৩০ বছর বয়সী এক নারী নৌকায় ভোট দিয়েছেন। বয়স্ক ওই নারীর উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, 'আমি শেষবারের মতো শেখ হাসিনাকে ভোট দিতে চাই।' অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনাকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৯৮টির মধ্যে ২২২টি আসন পেয়েছে। আগামীকাল সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নেবেন। শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় তাদের নেতাকর্মীরা এখন হতাশ হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন বানচালের জন্য বিএনপি-জামায়াত চক্র বারবার চেষ্টা করেছে। 'তবে তারা ব্যর্থ হয়েছে,' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় এবারও তাদের ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নির্বাচন বানচাল করার জন্য জনগণকে পুড়িয়ে হত্যা করছে এবং সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করছে। তিনি আরও বলেন, যাদের মনুষ্যত্ব আছে তারা মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করতে পারে না। তিনি বলেন, নির্বাচনে কতিপয় রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ না করা কোনো ব্যাপার নয়, জনগণের অংশগ্রহণই গুরত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ যদি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় না চায়, আমরা তাদের ম্যান্ডেট মেনে চলব। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় আসায় জনগণ দেড় মাসের মধ্যে বিএনপি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল। তারা ২০০৬ সালে ভোটার তালিকায় ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার অন্তর্ভুক্ত করার পর কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করেছিল এবং দেশবাসী তাদের চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ কোনো অন্যায়কে কখনোই মেনে নেয় না। প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট দেশে পরিণত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বিদেশি প্রভুদের পরামর্শ মেনে চললে বাংলাদেশের রাজনীতিতে কেউ টিকে থাকতে পারবে না।
সিদ্ধান্ত বদল, আগামীকাল শপথ নেবেন জাপার ১১ এমপি
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দলের নবনির্বাচিত এমপিদের শপথের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত বদল করেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। এর আগে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে যে ১১ জন নির্বাচিত হয়েছেন তারা আগামীকাল বুধবার শপথ নেবেন না। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত বদল করে শপথ নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে। জাপার যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম আজ সন্ধ্যায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলের পূর্ব ঘোষিত বৃহস্পতিবারের সভা বাতিল করা হয়েছে। আগামীকাল শপথ নেবেন জাতীয় পার্টির নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যবৃন্দ। আগামীকাল সকাল ১০টার মধ্যে জাতীয় সংসদ ভবনের বিরোধী দলীয় উপনেতার কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের উপস্থিত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দলের নবনির্বাচিত এমপিদের শপথের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত বদল করেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। এর আগে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে যে ১১ জন নির্বাচিত হয়েছেন তারা আগামীকাল বুধবার শপথ নেবেন না। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত বদল করে শপথ নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে।
ভাই আসুন ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে কাজ করি: শামীম হককে এ কে আজাদ
ফরিদপুর ৩ (সদর) আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য এ কে আজাদ তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শামীম হককে 'ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে কাজ করা'র আহ্বান জানিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে ফরিদপুরে এ কে আজাদের নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি। এ কে আজাদ বলেন, 'শামীম হক জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আমার ভাই। আমি এখনো তাকে অনুরোধ করছি, সব ভেদাভেদ ভুলে আসুন আমরা একসঙ্গে ফরিদপুরের উন্নয়নে কাজ করি। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য্য। ভোটে হেরে কাউকে দোষারোপ না করে আসুন আমরা একসঙ্গে কাজ করি।' তিনি বলেন, 'প্রচারণা শুরুর পর থেকে ধারাবাহিকভাবে ঈগলের অনেক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ওপর হামলা, নির্যাতন চালানো হয়েছে। নির্বাচনের আগের দিন আমার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও জেলা পরিষেদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক ভোলা মাস্টারের ওপর নির্মম হামলা চালানো হয়।' তিনি আরও বলেন, 'শুরু থেকেই হামলা, মিথ্যা মামলা, ভয়ভীতি উপেক্ষা করে মানুষ আমাকে সাহস ও সমর্থন দিয়ে গেছেন। ব্যালটের মাধ্যমে মানুষ হামলা, মামলা, বাধা, বিপত্তির জবাব দিয়েছেন।' সবাইকে নিয়ে বিজয়ের আনন্দ উদযাপনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'বিপুল জয়ের পরপরই আমার নেতাকর্মীদের বলেছি, কারো প্রতি কোনো ধরনের প্রতিহিংসা নয়। নির্বাচনের আগেও বারবার বলেছিলাম, ফরিদপুর যেন সন্ত্রাসের রাজত্ব না হয়, চাঁদাবাজ মুক্ত হয়। সেই অঙ্গীকার থেকেই বলছি, ফরিদপুরকে একটি মডেল জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করে যাবো।' এ কে আজাদ বলেন, 'সারা বাংলাদেশের মতো ফরিদপুরেও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রী এমন নির্বাচন উপহার দেওয়ায় তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ফরিদপুরে ৫২ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন। বাধা, হামলা উপেক্ষা করে তারা কেন্দ্র গিয়েছেন।'
ফরিদপুর ৩ (সদর) আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য এ কে আজাদ তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শামীম হককে 'ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে কাজ করা'র আহ্বান জানিয়েছেন।
বিএনপি নেতা নবীকে বেনাপোল এক্সপ্রেসে অগ্নিসংযোগ মামলায় গ্রেপ্তার দেখাতে আবেদন পুলিশের
গত ৫ জানুয়ারি ঢাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় করা মামলায় ঢাকা দক্ষিণ মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবীসহ দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতে পৃথক দুটি আবেদন করেছে রেল পুলিশ। ঢাকা রেলওয়ে থানার পুলিশ পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস আজ মঙ্গলবার এ আবেদন করলে, ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগম দুজনের উপস্থিতিতে আবেদনের ওপর শুনানি আগামীকাল বুধবার হবে বলে আদেশ দেন। অপরজন হলেন-যুবদল নেতা মনসুর আলম। আগামীকাল শুনানির সময় দুজনকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন ম্যাজিস্ট্রেট। গত শুক্রবার রাতে ঢাকার গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেসে ট্রেনে আগুনের ঘটনায় চার জন নিহত হন। আদালতে দেওয়া আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, অভিযুক্ত ওই দুজন ট্রেনে অগ্নিসংযোগের পরিকল্পনাকারী ও অর্থদাতা। একটি ভিডিও কনফারেন্সে এ পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এছাড়া ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তারা সরাসরি জড়িত ছিল। তাই তাদের এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো উচিত বলে উল্লেখ করা হয় আবেদনে। বংশাল থানায় করা এ মামলায় এর আগে মনসুর আলমকে দেখানো হয় এবং ৬ জানুয়ারি গ্রেপ্তারের পর যাত্রাবাড়ী থানায় করা একটি নাশকতা মামলায় নবী উল্লাহকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। অগ্নিসংযোগের ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের দুজনকে পরে রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
গত ৫ জানুয়ারি ঢাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় করা মামলায় ঢাকা দক্ষিণ মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবীসহ দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতে পৃথক দুটি আবেদন করেছে রেল পুলিশ।
বিজয়ী স্বতন্ত্র ও পরাজিত নৌকা প্রার্থীর পাল্টাপাল্টি অবস্থান, মহাসড়ক অবরোধ
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ডেকেছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এবং পরাজিত আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোজাহেরুল ইসলাম তালুকদার। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১টা থেকে এই পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ঘিরে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করা হয়েছে। দুপুর ২টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে উভয় পক্ষ। দুই পক্ষের মধ্যে কয়েকটি সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের কয়েকজন। জানা যায়, প্রথমে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী তার আটক কর্মীদের মুক্তির দাবিতে কালিহাতী থানার সামনে জড়ো হয়। পরে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে তিনি দলবল নিয়ে থানার সামনে রাস্তার ওপর বসে পড়েন। এসময় ব্যস্ত টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে পরাজিত আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোজাহেরুল ইসলাম তালুকদার তার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে মিছিল করে থানার সামনে উপস্থিত হলে উভয়পক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশের অনুরোধে মোজাহেরুল ইসলাম তালুকদার তার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে সেখান থেকে কিছুটা দুরে সরে গেলেও কর্মী সমর্থকদের নিয়ে রাস্তার অবরোধ করে বসে ছিলেন লতিফ সিদ্দিকী। দুপুর পৌনে ২টার দিকে পুলিশ উভয় পক্ষের মাঝখানে অবস্থান নেয়। কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ফারুক জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিনিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আছেন। দু'পক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে অবরুদ্ধ মহাসড়কের দু'পাশে কয়েকশ গাড়ি আটকা পড়ে। পরে ৩টা ১৫ মিনিটে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফ সিদ্দিকী।
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ডেকেছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এবং পরাজিত আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোজাহেরুল ইসলাম তালুকদার।
আপাতত হরতাল-অবরোধের পরিকল্পনা নেই বিএনপির
নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করলেও আগামী কয়েকদিন হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচিতে যাবে না বিএনপি। আওয়ামী লীগের প্রধান বিরোধী দলটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে জনসমর্থন আদায়ে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণসহ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে যেতে চায়। পশ্চিমা দেশগুলো যারা দীর্ঘদিন ধরে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে আসছে তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে দলটি পরবর্তী কর্মপন্থা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবে বলে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কাছ থেকে দ্য ডেইলি স্টার জানতে পেরেছে। আপাতত আজ ও আগামীকাল গণসংযোগ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি। জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন সেইসাথে কালো পতাকা মিছিল আয়োজন হতে পারে। গত রোববার দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের ভার্চুয়াল সভায় আলোচনা অনুযায়ী, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে কারাবন্দি নেতা-কর্মীদের মুক্তির দিকে মনোনিবেশ করতে চায় দলটি। স্থায়ী কমিটির সদস্যদের বরাত দিয়ে নেতারা বলেন, বিএনপির নির্বাচন বর্জনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে জনগণ ভোটকেন্দ্রে যায়নি। ভোটকেন্দ্রে লাইন না থাকায় ভোটার উপস্থিতি ১০ শতাংশের বেশি ছিল না। '৪০ শতাংশ ভোট দান অবিশ্বাস্য। শেষ এক ঘণ্টায় ১৩ শতাংশ ভোট পড়েছে এবং প্রথম সাত ঘণ্টায় ২৭ শতাংশ ভোট পড়েছে। এটা অযৌক্তিক।' 'এ ছাড়া বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন ও ভিডিও ফুটেজে অনিয়ম ধরা পড়েছে।' তাই এই নির্বাচন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের সমালোচনা করবে এবং কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে আসতে পারে যা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। দলটি ইতিমধ্যে ভোট কারচুপি এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সহিংসতা সম্পর্কিত নথি সংগ্রহ করেছে। শিগগির এসব নথি ঢাকায় অবস্থানরত কূটনীতিক মিশনে পাঠানো হবে। বিএনপির শীর্ষ নেতারা কূটনীতিকদের ব্রিফও করতে পারেন। দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য বলেন, প্রায় ৩০ হাজার নেতাকর্মী এখন কারাগারে রয়েছেন এবং তাদের মুক্তির বিষয়টি এখন প্রধান বিষয় হওয়া উচিত। এ কারণে দল কোনো কঠোর কর্মসূচিতে যাবে না বলেও জানান তিনি। গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। ২৮ অক্টোবর দলের সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাধা দেওয়ায় পর থেকে কার্যালয়টি তালাবদ্ধ ছিল।
নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করলেও আগামী কয়েকদিন হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচিতে যাবে না বিএনপি।
আওয়ামী লীগ কথা রাখেনি: জি এম কাদের
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান (জাপা) জি এম কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার যে প্রতিশ্রুতি পেয়ে তারা নির্বাচনে এসেছিলেন, সেই পরিবেশ ছিল না। প্রশাসন পুরোপুরি আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেছে। জাতীয় পার্টির এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে জোর করে নৌকায় সিল মারা হয়েছে। আওয়ামী লীগ কথা দিয়ে কথা রাখেনি। এছাড়া নির্বাচনে জাপার প্রার্থীদের বিভ্রান্ত করার অভিযোগও এনেছেন জাপা চেয়ারম্যান। আজ সোমবার রংপুরের বাসভবনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন জি এম কাদের। জাপা চেয়ারম্যান বলেন, 'গতকাল যে নির্বাচনী ফলাফল আমরা দেখেছি, তাতে আমরা আশানুরূপ ফলাফল পাইনি। আমাদের বারংবার কতগুলো কথা বলা হচ্ছে, এখনো প্রচার করা হচ্ছে সরকারের তরফ থেকে বা অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বলছেন যে আমাদের আসন ছাড় দেওয়া হয়েছে। 'আমি বারংবার বলেছি, কোনো মহাজোট হয়নি, কোনো আসন ভাগাভাগি হয়নি, কোনো আসন ছাড় দেওয়া হয়নি। আমরা চেয়েছিলাম একটি পরিবেশ—প্রথম কথা ছিল প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকবে এবং আমাদের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও অর্থের প্রভাবমুক্ত পরিবেশ থাকবে। তারা আমাদের কথা দিয়েছিলেন, নিশ্চিত করেছিলেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে তারা ২৬টি আসনে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী দেননি। নৌকা মার্কার প্রার্থী প্রত্যাহার করেছিলেন। তখনো আমি বলেছিলাম, এটা কোনো সমঝোতা নয়, আসন ভাগাভাগি নয়।' জি এম কাদের আরও বলেন, 'যেহেতু ওখানেই তারা আওয়ামী লীগের শক্ত একজন প্রতিদ্বন্দ্বী দিয়েছেন স্বতন্ত্র। তাকে তারা বিদ্রোহী বলেননি, তাকে তারা দল থেকে বহিষ্কারও করেননি। দল থেকে সম্পূর্ণ সমর্থন দেওয়া হয়েছে এবং দলীয় লোকজন তার সঙ্গে কাজ করেছে। সরাসরি আওয়ামী লীগের লোক আমাদের প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। অনেক ক্ষেত্রে আমরা বহিষ্কার করেছি এ রকম প্রার্থীকে আমাদের বিরুদ্ধে ওই ছেড়ে দেওয়া আসন বলে আওয়ামী লীগের লোক সমর্থন করেছে।' দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যে ফলাফল তা অনুমিত ছিল বলেও মনে করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, 'তারা আসনটা একেবারে ছেড়ে দেয়নি। তাদের লোক দিয়ে আসন নিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই কথাটা বলে একটা বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছিল এবং সবার একটা ধারণা ছিল আমরা আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করছি, আওয়ামী লীগের ভিকটিম হয়ে গেছি। 'ইচ্ছাকৃত হোক আর অনিচ্ছাকৃত হোক, সরকার এটা প্রচার করেছে এবং আমাদের মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। প্রার্থীদের বিভ্রান্ত করা হয়েছে, দলকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে।' জাপা চেয়ারম্যান বলেন, 'কাল (রোববার) সকাল থেকে এবং নির্বাচনের আগের রাত থেকে আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে খবর পাচ্ছিলাম, আমাদের প্রার্থীদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। জোর করে এজেন্টদের বের করে কাগজপত্র কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। বাসায় বাসায় গিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, যেটা আমি গতকাল বলেছিলাম। পরবর্তীতে সারাদিন ধরে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। দুপুর ২টার মধ্যে তারা সব ভোটকেন্দ্র দখল করে ফেলেছে। আমাদের এজেন্টদের বের করে দিয়ে তাদের এজেন্ট দিয়ে সিল মারিয়েছে। সেখানে প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসার আমাদের মানুষকে কোনো সমর্থন করেনি। সম্পূর্ণ প্রশাসন তাদের পক্ষে কাজ করেছে। যেটা আমরা সব সময় আশঙ্কা করেছিলাম।' জি এম কাদেরের ভাষ্য, 'এটার বিপক্ষেই আমাদের কথা ছিল যে, আমরা (নির্বাচনে) আসব তোমাদের কথায়, নির্বাচন করতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা নির্বাচন করতে চাই এবং সংগঠনকে শক্তিশালী করতে চাই। সংসদের মাধ্যমে আমরা আমাদের রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। তারা কথা দেওয়ার পরও এই কথাটা তারা রাখেননি।' এর আগে গতকাল ভোটের দিন অনিয়মের অভিযোগ তুলে জি এম কাদের বলেছিলেন, 'কাল সারা দিন আমাদের কাছে খবর এসেছে এবং আমরা অসহায় হয়ে গেছি। যেখানে যেখানে দরকার আমরা সবখানে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি। তারা বলেছে, করছি—এখনই লোক পাঠাচ্ছি কিন্তু কিছুই করা হয়নি। এসব সব কেন্দ্রে আমাদের যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল। এর মধ্য থেকে আমাদের বিপুল সংখ্যক প্রার্থী বেরিয়ে আসত। 'এখন আরও খবর পাচ্ছি বিভিন্ন জায়গা থেকে; ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে, বাড়ি-ঘর ঘেরাও করে...যে তোমরা আর নির্বাচন করছো না—এটা লিখে দাও, বলে দাও; এ রকম করে তাদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।' গতকালের ভোটের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে 'একটা নতুন ধরনের ডায়মেনশন দেখা গেছে' মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'ভবিষ্যতে এটার জন্য সরকারকে মাশুল দিতে হবে বলে।'
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান (জাপা) জি এম কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার যে প্রতিশ্রুতি পেয়ে তারা নির্বাচনে এসেছিলেন, সেই পরিবেশ ছিল না। প্রশাসন পুরোপুরি আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেছে। জাতীয় পার্টির এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে জোর করে নৌকায় সিল মারা হয়েছে। আওয়ামী লীগ কথা দিয়ে কথা রাখেনি।
নতুন সরকার অ্যা গভর্নমেন্ট অব দ্য ডামি, বাই দ্য ডামি, ফর দ্য ডামি: মঈন খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আগ পর্যন্ত তার দল রাজপথে থাকবে। তিনি বলেন, 'আগামীকাল ও পরশু বিএনপি গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করবে। এরপর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।' দুই মাস পরে আজ সোমবার সকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। মঈন খান বলেন, 'প্রথমে ছিল ডামি প্রার্থী, তারপর হলো ডামি ভোটার এবং সর্বশেষ সরকার যেটা করল ডামি অবজার্ভার। জনগণ কাল ভোট বর্জন করে এই বার্তা স্পষ্ট করে দিয়েছে, বর্তমান সরকার, বর্তমান নির্বাচন কমিশন ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন—সবই ভুয়া।' তিনি বলেন, 'গতকাল ওয়াশিংটন পোস্ট এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে লেখা হয়েছে, তাদেরই আনা একজন অবজার্ভার বলেছেন, বাংলাদেশের যে নির্বাচনী প্রক্রিয়া, তার মাধ্যমে বাংলাদেশ উত্তর কোরিয়ান সিস্টেমের দিকে এগোচ্ছে। ডামি অবজার্ভারদের মধ্যে একজন সত্য কথা না বলে পারেননি।' এই সরকারের অধীনের কোনো নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারে না মন্তব্য করে মঈন খান বলেন, 'একজন বিদেশি সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে আমি বলেছিলাম, আজকে আওয়ামী লীগ সরকার যদি আমাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করে দেয়, আমিও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারব না। কারণ এটা একটা সিস্টেম। সব নিয়ন্ত্রণ নির্বাহী শাখার হাতে চলে গেছে। 'সেই কারণে এখানে নিরপেক্ষ, নির্দলীয় একটি সরকার গঠন করতে হবে। তাদের মাধ্যমে এ দেশের একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে। গতকালের ঘটনা প্রবাহ প্রমাণ করে দিয়েছে আমাদের এই বক্তব্য সঠিক,' বলেন তিনি। এ সময় দলের পক্ষ থেকে সরকারের পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায় সরকার গঠন ও তার অধীনে নতুন করে নির্বাচন দাবি করেন মঈন খান। গতকাল কোনো নির্বাচন নয়, ক্ষমতাসীন দলের সাজানো নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, 'এ কথা হয়তো বলা যায়, বাংলাদেশের মানুষ হিউমারপ্রিয়, চিন্তা-ভাবনা করছে নতুনভাবে যে সরকার গঠন করবে এই ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা কি এভাবে বলতে পারি—এ গভর্নমেন্ট অব দ্য ডামি, বাই দ্য ডামি, ফর দ্য ডামি?' মঈন খান বলেন, 'বাংলাদেশের মানুষ তাদের নৈতিক শক্তিতে বলীয়ান হয়ে বর্তমান স্বৈরাচারী অবস্থান পরিবর্তন ঘটাবে।' তিনি বলেন, 'বিএনপি জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা রাজপথে নেমেছি জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য, সেই আন্দোলনে আমরা রাজপথে ছিলাম, আমরা রাজপথে আছি এবং আগামীতে আমরা রাজপথে থাকব—যতদিন জনগণের সত্যিকারের অধিকার আমরা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারি। এটাই বিএনপির প্রতিজ্ঞা।' এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আগামীকাল ও পরশু আমরা গনসংযোগ করব। তারপর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করব।'
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আগ পর্যন্ত তার দল রাজপথে থাকবে।
নির্বাচন নিয়ে সকাল থেকে ছেলেখেলা চলছে: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে সকাল থেকে ছেলেখেলা করছে সরকার। জনগণ এই নির্বাচন বর্জন করেছে। আজ রোববার বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন বলেন, 'আজ যে নির্বাচন হচ্ছে সেটি আদ্যোপান্ত একটি ইয়ার্কি-ঠাট্টার নির্বাচন। একতরফা একচেটিয়া নির্বাচনের সেটআপ তারা আগেই করেছে। কিন্তু তাদের ভেতরে উদ্বেগ উঁকি দিচ্ছে।' বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, 'আমরা আজ আনন্দিত যে আমাদের নেতাকর্মীদের বন্দি করে নির্যাতন করার পরও আমরা সত্য উচ্চারণে দ্বিধা করি না। আমরা মানুষের কাছে নির্বাচন বর্জন করতে বলেছি।' তিনি বলেন, 'মানুষ অভূতপূর্বভাবে আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছে। ইতিহাস আজ সাক্ষী হয়ে থাকবে। এতকিছুর পরও এক থেকে দেড় শতাংশের বেশি ভোটারদের তারা ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যেতে পারেনি।' প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের বক্তব্যের উল্লেখ করে রিজভী বলেন, 'তিনি কিছুক্ষণ আগে বলেছেন ১৭-১৮ শতাংশ ভোটগ্রহণ হয়েছে। উনি কীভাবে বললেন এই কথা। তিনিই কিন্তু বলেছেন যে বিভিন্ন কেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।' তিনি বলেন, 'একতরফা নির্বাচনের সব বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে এ নির্বাচনে। সকাল থেকে কোনো ভোটকেন্দ্রে কেউ নেই। আমরা একটি বিশ্বাসযোগ্য ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে আসছিলাম।' 'এটি কোনো নির্বাচনী প্রতিক্রিয়া নয়' মন্তব্য করে এই বিএনপি নেতা বলেন, 'জনগণ যে ভোট দিতে না যাওয়ার আহ্বান শুনেছেন, আমরা সেই জনগণকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। ২০১৪ আর ২০২৪ যেন মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। তবুও, সকাল থেকে শুরু হয়েছে নিজেদের মধ্যে মারামারি।' 'বিভিন্ন জায়গায় স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকারের সব সুবিধা পেয়েছে। সরকার যেমন নৌকার প্রার্থীদের বিজয়ী করার চেষ্টা করছে, তেমনি অনেক জায়গায় স্বতন্ত্র প্রার্থীকেও তারা বিজয়ী করার চেষ্টা করছে,' বলেন তিনি। রিজভী বলেন, 'অনেক জায়গায় ব্যালট পেপারে আগেই নৌকায় সিল মারা পাওয়া গেছে। তাহলে দেখুন এরা কতটা আত্মবিশ্বাসহীন। শুধু তাই নয়, আরও অসংখ্য তামাশা দেখা গেছে। দোহারে শিশুদের ভোট দিতে দেখা গেছে।' তিনি বলেন, 'তারা কারচুপি করবে বলেই অনেক জনপ্রিয় পত্রিকার অনলাইন বন্ধ করে দিয়েছে। এখন তাদের শরিক দলের নেতারা মুখ খুলছেন। এটা কারচুপি না, এটা প্রকাশ্যে ডাকাতির নির্বাচন। ভোটার যখন আসছে না, তখন সিল মেরে ব্যালট ভরতে হচ্ছে। সিলেটে হাসপাতাল থেকে নার্সদের ধরে এনে ভোটের লাইনে দাঁড় করানো হচ্ছে।' রিজভী আরও বলেন, 'এসব ঘটনা তুলে ধরার কারণ হচ্ছে যে, নির্বাচনকে নিয়ে সকাল থেকে কী ধরনের ছেলেখেলা এই সরকার করছে, তা জানানো। আওয়ামী পরিবারের কিছু লোক ছাড়া সবাই এই প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করেছে।'
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে সকাল থেকে ছেলেখেলা করছে সরকার। জনগণ এই নির্বাচন বর্জন করেছে।
নাশকতার মাধ্যমে সরকার ডামি নির্বাচন থেকে বিশ্বের মনোযোগ সরাতে চায়: বিএনপি
ট্রেনে আগুনের ঘটনাকে আওয়ামী লীগের নাশকতা দাবি করে এ ঘটনা বিরোধী দলের সরকারের ওপর ক্র্যাকডাউনের অজুহাত বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। আজ রোববার দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, গত পরশু ঢাকায় একটি ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৪ জন নিরীহ মানুষ মারা যাওয়া এবং হাসপাতালে আরও অনেকের ভোগান্তির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে বিএনপি। রাষ্ট্র আমাদের চলমান শান্তিপূর্ণ ও অহিংস আন্দোলনকে কলঙ্কিত করতে পূর্ব পরিকল্পিত নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের নীলনকশা বাস্তবায়ন করছে। বিএনপি বলছে, 'এ ঘটনার পর ক্রমবর্ধমান অভিযান ও গ্রেপ্তার প্রমাণ করে যে, ধারাবাহিক পদ্ধতিগত দমন-পীড়ন জোরদারের লক্ষ্যে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ যৌথভাবে বিএনপিকে দোষারোপ করছে। এছাড়াও তারা অনিয়ম ও কারচুপির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত পূর্বনির্ধারিত ফলাফলসহ তথাকথিত ডামি নির্বাচন থেকে বিশ্বব্যাপী মনোযোগ সরাতে চায়।' 'এভাবেই ক্ষমতা আঁকড়ে ধরতে এবং অবৈধ ক্ষমতার ওপর দখল বজায় রাখতে শেখ হাসিনার শাসনামল ২৭০০টির বেশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ৭০০টির বেশি জোরপূর্বক গুম এবং ৫০ লাখের বেশি গণতন্ত্রপন্থী মানুষের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি সুস্পষ্ট রেকর্ডসহ অগ্নিসংযোগের ঘটনার অবতারণা করছে,' যোগ করা হয় বিবৃতিতে। বিবৃতিতে বলা হয়, 'আওয়ামী লীগের কারণে আরও অনেক হত্যা যুক্ত হতে পারে তাদের আগের হাজার হাজার প্রাণনাশের ঘটনার সঙ্গে। এদিকে বিএনপি প্রতিনিধিত্ব করে গণতন্ত্রকামী মানুষদের প্রতিদিনের আত্মোৎসর্গের বিয়োগান্তক পর্বের। যেহেতু তাদের বিকাশমান জীবন, স্বাধীনতা ও অধিকার সমর্পণ করার জন্য নিষ্ঠুর চাপ প্রয়োগ করা হয়।' বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী ও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ইতিহাসের উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা জনগণের জীবন ও সম্পত্তির বিনিময়ে আওয়ামী লীগের ব্লেম গেমের হিংসাশ্রয়ী কৌশল প্রত্যক্ষ করছি। প্রথমে আওয়ামী লীগ নেতারা বিরোধীদের আসন্ন সহিংসতা সম্পর্কে সন্দেহজনক বক্তব্য দিয়ে সতর্কতা জারি করে এবং তারপর তাদের তথাকথিত সন্দেহকে বাস্তবে রূপ দিতে সেই বিশেষ হিংসাত্মক কাজটি করে এবং সর্বত্র বিএনপিকে দোষারোপ করে। মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনার মাত্র দুইদিন আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সন্দেহজনক সুরে মন্তব্য করেছিলেন, "বিএনপি সহিংসতা এড়ানোর দাবি করলেও তাদের বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য নয় কারণ তারা প্রায়শই এক কথা বলে এবং করে অন্য। আমি তথ্য পেয়েছি যে তারা কিছু ষড়যন্ত্র করছে।" এই বক্তব্য প্রমাণ করে যে, শাসকগোষ্ঠীর নাশকতা আক্রমণ পূর্বপরিকল্পিত ছিল, এটি তার নৃশংস দমন-পীড়ন এবং বিএনপির বিরুদ্ধে সুচারু প্রচারণার ন্যায্যতা দেওয়ার একটি উপায় হিসাবে কাজ করছে। বিরোধীদের বিরুদ্ধে তীব্র মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে অগ্নিসংযোগের হামলার সুস্পষ্ট সুবিধাভোগী হিসেবে আওয়ামী লীগ আবারও আবির্ভূত হয়েছে বলে জোরালো প্রমাণ রয়েছে।' বিবৃতিতে বলা হয়, 'আমাদের বিশ্বাস করার কারণ রয়েছে যে এটি জনজীবনের মূল্যে ফ্যাসিবাদকে সংহত করার জন্য শাসনের সর্বশেষ প্রচেষ্টা।' এ অবস্থায় ট্রেনে আগুনের ঘটনায় জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক স্টেকহোল্ডারদের সমন্বয়ে একটি নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
ট্রেনে আগুনের ঘটনাকে আওয়ামী লীগের নাশকতা দাবি করে এ ঘটনা বিরোধী দলের সরকারের ওপর ক্র্যাকডাউনের অজুহাত বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।
মুন্সীগঞ্জে ভোটকেন্দ্রের পাশ থেকে নৌকার সমর্থকের মরদেহ উদ্ধার
মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভায় একটি ভোটকেন্দ্রের পাশ থেকে নৌকার এক সমর্থকের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত জিল্লুর রহমান (৪৫) মিরকাদিম পৌর শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। আজ রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মীরকাদিমের রিকাবিবাজার ২ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের  প্রায় ১০০ ফুট দূরে তার ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. আসলাম খান দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহত জিল্লুর রহমান মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী মৃণাল কান্তি দাসের সমর্থক ছিলেন বলে জানা গেছে। তবে, ওই এলাকায় এখন পর্যন্ত কোনো সংঘর্ষের খবর পায়নি পুলিশ। পুলিশ সুপার বলেন, 'মরদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে আমরা সেখানে যাচ্ছি। তবে, ওই কেন্দ্রের আশেপাশে কোনো সহিসংতা হয়নি।' যোগাযোগ করা হলে নিহতের স্ত্রী রেহেনা বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পৌরসভার সাবেক মেয়র শাহীন ও তার লোকেরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।' এ আসনে নৌকার প্রার্থী মৃণাল কান্তি দাসকে ফোন করা হলে, তিনি নিহত জিল্লুরকে তার সমর্থক দাবি করে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে তা এখনই ফোনে বলতে চাচ্ছি না। তদন্তাধীন বিষয়ে এভাবে বলা ঠিক হবে না।'
মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভায় একটি ভোটকেন্দ্রের পাশ থেকে নৌকার এক সমর্থকের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের চান্দগাঁওয়ে সড়ক অবরোধের চেষ্টা বিএনপির, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ
চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও এলাকায় সড়ক অবরোধের চেষ্টা করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় অবরোধকারীদের। তবে, বিএনপির নেতাকর্মীদের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। আজ রোববার সকাল ৯টার পর চান্দগাঁওয়ে শরাফতউল্লাহ পাম্পের সামনের সামনে আগুন জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করা হয়। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার পঙ্কজ দত্ত দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, 'সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে, অবরোধকারীরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।' তিনি জানান, পুলিশ ফাঁকা গুলি করলে অবরোধকারীরা পালিয়ে যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে, সড়ক অবরোধকারী বিএনপিকর্মীদের নাম-পরিচয় জানাতে পারেননি এই পুলিশ কর্মকর্তা।
চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও এলাকায় সড়ক অবরোধের চেষ্টা করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় অবরোধকারীদের।
চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহে বাস-প্রাইভেটকার ও স্কুলে আগুন
চট্টগ্রামের কালুরঘাট বিসিকের বাদামতলে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের অফিসার তালহা বিন জসিম জানান, আজ শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে কালুরঘাট ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট সেখানে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তালহা বিন জসিম আরও জানান, আজ সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে ময়মনসিংহ সদরের নতুন বাজারে একটি প্রাইভেটকারে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে ময়মনসিংহ ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট সেখানে যায়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ৬টা ৫৫ মিনিটে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় মনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে মুক্তাগাছা ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট ৭টা ৫ মিনিটে সেখানে পৌঁছায়।
চট্টগ্রামের কালুরঘাট বিসিকের বাদামতলে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
‘ক্রসফায়ারের মতো প্রতিটি নাশকতায় একই কাল্পনিক গল্প বলছে সরকার’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ক্রসফায়ারের কাল্পনিক গল্পের মতো প্রতিটি নাশকতার ঘটনায় একই গল্প তৈরি করছে সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আজ শনিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা এ মন্তব্য করেন। গতরাতে ঢাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনার উল্লেখ করে রিজভী বলেন, 'এ ঘটনায় নৃশংস হতাহতের খবরের পরেই বিএনপির পক্ষ থেকে জাতিসংঘের মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছি। প্রকৃত দোষীদের আটক ও শাস্তি দাবি করছি। ইতোমধ্যে রেলওয়ে তদন্ত কমিটি করেছে। কিন্তু ঘটনার তদন্ত হওয়ার আগেই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান আজ এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, এ ঘটনায় নাকি বিএনপি নেতাকর্মীদের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে ডিবি।' 'তদন্ত হলো না, কিছু হলো না। এখানেই তো প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে এই অমানবিক নৃশংস ঘটনার পেছনে কারা দায়ী। প্রতিবারই একই ঘটনা ঘটানো হয়। ঘটনা ঘটেছে ৯টার দিকে। আর যাদের নাম বলা হয়েছে যে, এদের কাছ থেকে তথ্য পেয়েছে, তাদর মধ্যে স্বপন ও দেলোয়ারকে সাড়ে ৬টার সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সাড়ে ৭টায় গ্রেপ্তার করা হয় মনসুরকে। কিন্তু ৯টার সময় যে আগুনের ঘটনা ঘটল, তাহলে এত নিরাপত্তার চাদরের মধ্যে পুলিশ টের পেল না এই নাশকতার তথ্য? এতে বোঝা যায় এটা যে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে,' বলেন তিনি। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, 'ক্রসফায়ারের কাল্পনিক গল্পের মতো প্রতিটি নাশকতার ঘটনায় একই গল্প তৈরি থাকে। প্রতিটি নাশকতার ঘটনার পর বিএনপির ওপর দোষ চাপানো আওয়ামী লীগ ও পুলিশের মজ্জাগত হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেন বিএনপিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সহিংস দল হিসেবে দেখাতে পারে। এটাও তাদের একটা চালাকি পরিকল্পিত কৌশল। কিন্তু সারা পৃথিবীর সবাই এখন জানে যে বাসে-ট্রেনে আগুন দেওয়ার মূল হোতা আওয়ামী লীগ।' নাশকতার অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব নবী উল্লাহ নবীকে গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, 'রাতে ট্রেনে আগুনের পর তারা এখন নানা কাহিনী সাজাচ্ছে, নাটক তৈরি করছে। এই গালগল্প করার জন্য এখন তারা বিএনপি নেতাদের আটক করে কনফেশন করাচ্ছে। জুলুমের ভয় দেখিয়ে এগুলো করা হচ্ছে।' 'সরকারের তদন্তের ওপর জনগণের ন্যূনতম বিশ্বাস নেই' মন্তব্য করে রিজভী বলেন, 'সরকারের তদন্তের টার্গেট থাকে বিএনপিকে দোষী বানানো। আমরা বিভিন্ন সূত্র থেকে খবর পেয়েছি যে বিভিন্ন গণমাধ্যমের ওপর চাপ দেওয়া হচ্ছে যেন, নির্বাচনের কোনো অনিয়ম-কারচুপি-ভয়ভীতির খবর যেন প্রকাশ না করে।' তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে দেশটাকে জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি বানিয়ে ফেলেছে। এই স্বৈরাচার সরকার দেশের জনগণকে নিয়ে পৈশাচিক খেলায় মেতে উঠেছে।' 'আরও একটি একতরফা পাতানো নির্বাচন হতে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫ বছরের মতো ক্ষমতায় থাকতে আবারও এক বিপজ্জনক খেলার আয়োজন করেছে। আবারও প্রতারণার জাল বিছানো হয়েছে,' বলেন রিজভী। চলমান নির্বাচনী সহিংসতার উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এই যে প্রতিদিন নিজেরা নিজেরা মারামারি করে হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে, জীবনহানি ঘটছে, এগুলোর বিষয়ে পুলিশ কিছু বলে না কেন। এই হানাহানির মদদ কে দিচ্ছে?'
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ক্রসফায়ারের কাল্পনিক গল্পের মতো প্রতিটি নাশকতার ঘটনায় একই গল্প তৈরি করছে সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
লালমনিরহাটে ছাত্রদলের লাঠি মিছিল
লালমনিরহাটে 'ডামি নির্বাচন' বর্জনের দাবি জানিয়ে লাঠি মিছিল করেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। আজ শনিবার দুপুরে লালমনিরহাট শহরের মিশন মোড়ে লাঠি মিছিলটি বের করা হয়। লাঠি মিছিলে নেতৃত্ব দেন জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম আনন্দ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্রদলের ২০-২৫ জন নেতাকর্মী মিশন মোড় এলাকায় লাঠি মিছিল থেকে 'ডামি নির্বাচন' বর্জন ও হরতালকে সমর্থন জানিয়ে স্লোগান দেন। মিছিলটি ১০-১২ মিনিটের মধ্যেই শেষ হয়। এ সময় ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দেখা যায়নি। লালমনিরহাট জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম আনন্দ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ডামি নির্বাচন' বর্জন ও হরতালের সমর্থনে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে ছাত্রদল লাঠি মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের মিশন মোড় এলাকা প্রদক্ষিণ করে। তিনি বলেন, 'দেশের জনগণ বিএনপির দাবি বুঝতে পেরেছেন। তারা ভোটকেন্দ্রে যাবেন না এবং ভোট দিবেন না। তারা অবশ্যই নির্বাচনকে বর্জন করবেন।' লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।
লালমনিরহাটে 'ডামি নির্বাচন' বর্জনের দাবি জানিয়ে লাঠি মিছিল করেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। আজ শনিবার দুপুরে লালমনিরহাট শহরের মিশন মোড়ে লাঠি মিছিলটি বের করা হয়।
বিএনপি নেতা নবী উল্লাহ নবী ৩ দিনের রিমান্ডে
বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম-আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবীর ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় রাজনৈতিক সহিংসতার অভিযোগে গত বছরের নভেম্বরে করা মামলায় তাকে রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে। গতকাল রাতে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনায় অর্থদাতা হিসেবে গ্রেপ্তার এই বিএনপি নেতাকে আজ শনিবার রাজনৈতিক সহিংসতার মামলায় আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক আশরাফুল আলম নবীকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করলে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরী ৩ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।। গত বছরের ৫ নভেম্বর যাত্রাবাড়ী থানায় গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও পুলিশকে দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার অভিযোগে এসআই রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন। আদালতে নবীর জামিন চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে দেন ম্যাজিস্ট্রেট।
বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম-আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবীর ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় রাজনৈতিক সহিংসতার অভিযোগে গত বছরের নভেম্বরে করা মামলায় তাকে রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে।
ট্রেনে আগুন ‘নাশকতা’, জাতিসংঘের তদন্ত দাবি বিএনপির
বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনায় জাতিসংঘের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেছে বিএনপি। শুক্রবার রাতে এক বিবৃতিতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে হতাহতের হৃদয়বিদারক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, 'বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লাগিয়ে হতাহতের ঘটনা নিঃসন্দেহে নাশকতামূলক কাজ এবং মানবতার পরিপন্থী এক হিংস্র নিষ্ঠুরতা।' রিজভী বলেন, 'এই অমানবিক ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত ও দুরভিসন্ধিমূলক। আমরা এই ঘটনায় জাতিসংঘের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করছি এবং এই কাপুরুষোচিত ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর আহ্বান জানাচ্ছি।'
বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনায় জাতিসংঘের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেছে বিএনপি।
পুলিশের ধারণা ‘নাশকতা’, আইনমন্ত্রী বললেন ‘অগ্নিসন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করা হবে’
বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, এই অগ্নি সহিংসতা যারা করেছে, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় এনে সঠিক বিচার করে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। আইনমন্ত্রী বলেন, 'এই অগ্নিসন্ত্রাসীরা যেখানেই থাকুক না কেন, তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।' এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে এক শোকবার্তায় আইনমন্ত্রী নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং হতাহতদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। এদিকে, ঘটনাটিকে 'নাশকতা' বলে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঢাকা রেলওয়ে পুলিশ সুপার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা সন্দেহ করছি যে, অপরাধীরা যাত্রী পরিচয়ে ট্রেনে উঠে তাতে আগুন দিয়েছে।' আরও‘এটি ছিল আমাদের আনন্দের সফর, এখন দুঃস্বপ্ন হয়ে রইল’ ঘটনাস্থলে উপস্থিত র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখছি। আমাদের ধারণা দুর্বৃত্তরা এ কাজ করেছে।' ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, 'এটা নাশকতা... এটা অমানবিক। যারা এই অপরাধে জড়িত তাদের শাস্তি হবে।' রেলওয়ে পুলিশ ছাড়াও বিভিন্ন সংস্থা ঘটনাটির তদন্ত করছে বলেও জানান তিনি। আরওবেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের আগুনে নিহত ৪: র‌্যাব ঘটনাস্থলে উপস্থিত র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখছি। আমাদের ধারণা দুর্বৃত্তরা এ কাজ করেছে।' ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, 'এটা নাশকতা... এটা অমানবিক। যারা এই অপরাধে জড়িত তাদের শাস্তি হবে।' রেলওয়ে পুলিশ ছাড়াও বিভিন্ন সংস্থা ঘটনাটির তদন্ত করছে বলেও জানান তিনি। আরওবেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের আগুনে নিহত ৪: র‌্যাব
বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, এই অগ্নি সহিংসতা যারা করেছে, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় এনে সঠিক বিচার করে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
‘এটি ছিল আমাদের আনন্দের সফর, এখন দুঃস্বপ্ন হয়ে রইল’
কুষ্টিয়ার পোড়াদহ থেকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে করে ঢাকায় আসছিলেন তানিয়া। হঠাৎ ট্রেনটিতে আগুন লেগে গেলে দুই মেয়েকে নিয়ে ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন তিনি। ঘটনাস্থলে যখন তার সঙ্গে কথা হচ্ছিল, তখনো ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব ছিলেন তিনি। তানিয়া জানান, তাদের পাশের 'চ' বগিতে প্রথম আগুন দেখা যায়। তিনি বলেন, 'সবাই বলছিল যে, এটা গ্যাস থেকে শুরু হয়েছে। হৈ-চৈ হচ্ছিল। কেউ চেন টেনে ট্রেন থামিয়ে দিলো। আমি দুই মেয়েসহ ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিলাম।' একই স্টেশন থেকে আসা আতিয়ার জানান, 'চ' বগির পাশে একটি পাওয়ার কার রুম ছিল। সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তিনি বলেন, 'আমি ছেলে ও নাতীসহ "জ" বগি থেকে লাফ দিয়েছিলাম। আমাদের দুটি লাগেজ ট্রেনের ভেতরেই রেখে আসতে হয়েছে।' চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে আসছিলেন কাঠমিস্ত্রি আশরাফুল হক। তারা 'ছ' বগিতে ছিলেন। ৯ জানুয়ারি আশরাফুলের দুবাই যাওয়ার কথা রয়েছে। তিনি যখন তাদের বগিতে ধোঁয়া দেখতে পান, ট্রেন থামার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি তার তিন বছরের মেয়েকে ট্রেনের বাইরে একজনের দিকে ছুড়ে দেন।  এরপর তিনজন ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন। আশরাফুল বলেন, 'আমার পাসপোর্ট, নগদ ৫০ হাজার টাকা এবং লাগেজ ট্রেনের ভেতরেই ছিল। আমার চোখের সামনেই সেগুলো পুড়ে গেছে।' লালমাটিয়া গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক এস এম জয় জানান, তিনি স্ত্রীকে নিয়ে কলকাতা থেকে আসছিলেন। তারা 'ছ' বগিতে ছিলেন। 'ট্রেনটি সায়েদাবাদ ছাড়ার কিছুক্ষণ পর হঠাৎ থেমে যায়। আমরা ভেবেছিলাম স্টেশনে পৌঁছেছি। কিন্তু হঠাৎ আগুন দেখে আমরা ভয় পেয়ে গেলাম। আমাদের সমস্ত লাগেজ রেখে ট্রেন থেকে লাফ দিলাম', বলেন তিনি। এস এম জয় বলেন, 'এটি ছিল আমাদের আনন্দের সফর। কিন্তু এখন একটি দুঃস্বপ্ন হয়ে রইল।'
কুষ্টিয়ার পোড়াদহ থেকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে করে ঢাকায় আসছিলেন তানিয়া। হঠাৎ ট্রেনটিতে আগুন লেগে গেলে দুই মেয়েকে নিয়ে ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন তিনি। ঘটনাস্থলে যখন তার সঙ্গে কথা হচ্ছিল, তখনো ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব ছিলেন তিনি।
বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের আগুনে নিহত ৪: র‌্যাব
রাজধানীর গোপীবাগ এলাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে কমপক্ষে চারজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। ঘটনাস্থলে উপস্থিত র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। আরওগোপীবাগে ট্রেনে আগুন: নিহত ১ আজ শুক্রবার রাত ১০টা ২০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শাহজাহান শিকদার। এর আগে, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার ফরহাদুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজ শুক্রবার রাত ৯টা ৫ মিনিটের দিকে দুর্বৃত্তরা বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেয়।' ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের কমপক্ষে চারটি কামরায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে বলে জানা যায়। ঘটনাস্থলে এখনো উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিস ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা। আরওরাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন আজ শুক্রবার রাত ১০টা ২০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শাহজাহান শিকদার। এর আগে, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার ফরহাদুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজ শুক্রবার রাত ৯টা ৫ মিনিটের দিকে দুর্বৃত্তরা বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেয়।' ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের কমপক্ষে চারটি কামরায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে বলে জানা যায়। ঘটনাস্থলে এখনো উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিস ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা। আরওরাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন
রাজধানীর গোপীবাগ এলাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে কমপক্ষে চারজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।
গোপীবাগে ট্রেনে আগুন: নিহত ১
রাজধানীর গোপীবাগ এলাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে কমপক্ষে একজন নিহত হয়েছেন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার ফরহাদুজ্জামান বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন। আরওরাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন এর আগে, ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে তিনজন নিহতের তথ্য জানানো হয়।  ফরহাদুজ্জামান বলেন, 'আজ শুক্রবার রাত ৯টা ৫ মিনিটের দিকে দুর্বৃত্তরা বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেয়।' Video of ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট কাজ করে বলেও জানান তিনি। ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের কমপক্ষে তিনটি কামরায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে বলে জানা গেছে। কামরার ভেতরে অনেকেই আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করছে পুলিশ। বর্তমানে উদ্ধার তৎপরতায় ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরাও যোগ দিয়েছেন। রাত ১০টা ২০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানান ফরহাদুজ্জামান। এর আগে, ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে তিনজন নিহতের তথ্য জানানো হয়। ফরহাদুজ্জামান বলেন, 'আজ শুক্রবার রাত ৯টা ৫ মিনিটের দিকে দুর্বৃত্তরা বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেয়।' আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট কাজ করে বলেও জানান তিনি। ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের কমপক্ষে তিনটি কামরায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে বলে জানা গেছে। কামরার ভেতরে অনেকেই আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করছে পুলিশ। বর্তমানে উদ্ধার তৎপরতায় ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরাও যোগ দিয়েছেন। রাত ১০টা ২০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানান ফরহাদুজ্জামান।
রাজধানীর গোপীবাগ এলাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে কমপক্ষে একজন নিহত হয়েছেন।
রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন
রাজধানীর গোপীবাগ এলাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার ফরহাদুজ্জামান বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, 'আজ শুক্রবার রাত ৯টা ৫ মিনিটের দিকে দুর্বৃত্তরা বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেয়।' আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট কাজ করছে বলেও জানান তিনি। ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের কমপক্ষে তিনটি কামরায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে। কামরার ভেতরে অনেকেই আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করছে পুলিশ।
রাজধানীর গোপীবাগ এলাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
নারায়ণগঞ্জে পিকআপ ভ্যানে আগুন
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কের পঞ্চবটী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, 'খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। তবে তার আগেই স্থানীয়রা আগুন নিভিয়ে ফেলে। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।' অগ্নিসংযোগকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ কাজ করছে বলেও জানান ওসি।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
‘আমার লোকজনের ওপর হাত দিলে কেটে ফেলব’ পুলিশকে নৌকার প্রার্থী মোস্তাফিজ
চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী পুলিশের হাত কেটে ফেলার হুমকি দিয়েছেন। এছাড়া, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে হুমকি দেওয়া বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মুজিবুল হক চৌধুরীর যেন কোনো সমস্যা না হয় পুলিশকে তা খেয়াল রাখার নির্দেশও দেন তিনি। মোবাইল ফোনে বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদের কথা বলার সময় এ হুমকি দেন সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর। ওই কথোপকথনের এক মিনিট ৪০ সেকেন্ডের একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে গেছে। জেলা পুলিশ সুপার ওই অডিও ক্লিপের সত্যতা স্বীকার করলেও, হুমকির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন ওসি। অডিওর শুরুতে এমপি মোস্তাফিজুরকে বলতে শোনা যায়, 'ছনুয়াতে হাবিব গেছিল? ছনুয়া?' ওসি বলেন, 'না না স্যার। ও তো এখন নেই। সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত থেকে চলে এসেছে স্যার।' এমপি জানতে চান, 'কী জন্য গেছে?' ওসি বলেন, 'নিয়মিত ডিউটি স্যার।' তখন মোস্তাফিজ বলেন, 'আমার লোকজনের ওপর হাত দিলে আমি হাত কেটে ফেলব বলে দিলাম।' ওসিকে তখন বলতে শোনা যায়, 'স্যার, দিবে না স্যার। আমি বলে দিচ্ছি স্যার। এখনই বলে দিচ্ছি।' মোস্তাফিজ তখন বলেন, 'ওখানে আমাদের লোকজন ধরার জন্য হাফিজ না হাবিব গেছে। আমাদের আলমগীর একটা আছে তাকে খুঁজতেছে।' ওসি তখন বলেন, 'না না স্যার। ওটা তো প্রশ্নই উঠে না। ও চলে আসছে স্যার অনেক আগে।' এমপি তখন আবার বলেন, 'এমনি ঘুরে ফিরে থাক (পুলিশ) অসুবিধা নাই। কিন্তু আমার কোনো লোকজনের ওপর হাত দিলে বহুত অসুবিধা হবে।' ওসি তখন বলেন, 'স্যার দিবে না। স্যার আপনি যেভাবে বলেন।' মোস্তাফিজ তখন বলেন, 'আপনি তো আমার ঘরেও পুলিশ পাঠাইছেন।' ওসি তোফায়েল জবাবে বলেন, 'স্যার আমিতো…পুলিশ সেদিন যায় নি। ওদিন আমি আপার সাথে কথা বললাম। এমনিতেই ওরা নিয়মিত যায়। আপার সাথে ডিটেলস কথা বলছি। আপনার সম্মান বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করছি। এমপি স্যারের বাড়িতে তাও সাদা পোশাকে গেছে জানান দেওয়ার জন্য।' 'কী জন্য গেছে,' জানতে চান এমপি মোস্তাফিজ। তখন ওসি বলেন, 'এমনিতে গেছে স্যার। কোনো কারণ নেই, কাউকে ধরার জন্য না।' মোস্তাফিজ তখন বলেন, 'চাম্বলের মুজিবের ওপর যেন কোনো কিছু না হয়। ওখানে যেন সে কাজ করতে পারে খেয়াল রাখিও।' ওসি বলেন, 'কিছু হবে না স্যার ইনশাল্লাহ।' টেলিফোনের এ কথোপকথনের বিষয়ে জানতে বাঁশখালীর থানার ওসি তোফায়েলকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। অন্যদিকে এমপি মোস্তাফিজকে ফোন দেওয়ার পর তিনি রিসিভ করে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ামাত্র ফোন কেটে দেন। এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু তৈয়ব মো. আরিফকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। জেলা পুলিশের আরেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান রুবেলকে ফোন করা হলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি এখনো বিস্তারিত জানি না। আমাকে ওসি কিছু জানাননি।' এমপি মোস্তাফিজ ও ওসি তোফায়েলের কথোপকথনের সত্যতার বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল এমপি মোস্তাফিজ টেলিফোনে ওসিকে ওই কথাগুলো বলেছেন। বিষয়টা আমি শুনেছি। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। উনিও নন। এ বিষয়ে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।' মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে ২০১৪ সালে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে আবার নির্বাচিত হন তিনি। এবারও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন এই সংসদ সদস্য। তার বিপরীতে এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীকে নির্বাচন করছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ব্যবসায়ী মুজিবর রহমান। গত ৩০ নভেম্বর চট্টগ্রামের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের কার্যালয়ে চট্টগ্রাম-১৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তাফিজুর মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান। সেদিন সাংবাদিকদের প্রশ্ন শুনে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির প্রতিবেদক রাকিব উদ্দিনকে মারতে যান তিনি। এর আগে, ২০১৬ সালের ১ জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামকে ডেকে নিয়ে এসে  চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মেরে আলোচনায় আসেন মোস্তাফিজুর রহমান। এরপর ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে মোস্তাফিজুর রহমানের কটূক্তি করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে আবার আলোচনায় আসেন তিনি। ২০২০ সালের আগস্টে 'বাঁশখালীতে মুক্তিযুদ্ধ হয়নি' মন্তব্য করেও বিতর্কের সৃষ্টি করেন তিনি।
চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী পুলিশের হাত কেটে ফেলার হুমকি দিয়েছেন।
শনিবার সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টা হরতাল: বিএনপি
সংসদ নির্বাচনের আগেরদিন আগামী শনিবার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টা হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এছাড়া, নির্বাচন বর্জন এবং সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আগামীকাল শুক্রবার দেশব্যাপী মিছিল ও গণসংযোগ কর্মসূচির ঘোষণা দেন। রিজভী বলেন, '৬ জানুয়ারি শনিবার সকাল ৬টা থেকে ৮ জানুয়ারি সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টা হরতাল। অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা এবং সব কারাবন্দিদের মুক্তি দাবিতে এ কর্মসূচি পালন হবে।'
সংসদ নির্বাচনের আগেরদিন আগামী শনিবার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টা হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি।
নাটোরে বিএনপির লিফলেট বিতরণে পুলিশের বাধা, সংঘর্ষে আহত ৪
নাটোরের সিংড়ায় বিএনপির লিফলেট বিতরণে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে অন্তত চার জন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দাউদার মাহমুদ (৪৩)সহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকি দুজন হলেন—এস এম জার্ভিস কাছির (৬২) ও মো. আসাদ আলী (২৫)। সিংড়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আক্তারুজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিংড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় লিফলেট বিতরণ শুরু করে বিএনপি। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে সিংড়া থানার এসআই আব্দুর রহিমসহ দুই পুলিশ সদস্য এবং এক বিএনপি কর্মী আহত হয়েছেন। নাটোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, বিএনপি নেতা দাউদার মাহমুদের নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা লিফলেট বিতরণ করছিলেন। এ সময় পুলিশের উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা দাউদার মাহমুদের পেট্রোল পাম্পে হামলা ও ভাঙচুর করেন। পরে দাউদার মাহমুদকে আটক করে পুলিশ। নাটোরের পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম জানান, বিএনপি কর্মীদের অতর্কিত হামলায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ সময় বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে বিএনপি কর্মীরা। পরে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দাউদার মাহমুদসহ তিন জনকে আটক করা হয়।
নাটোরের সিংড়ায় বিএনপির লিফলেট বিতরণে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে অন্তত চার জন আহত হয়েছেন।
সাজানো সেটআপে অংশগ্রহণমূলক-বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হবে না: রিজভী
সাজানো সেটআপ দিয়ে অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেছেন। এ সময় তিনি নির্বাচন বর্জন এবং সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আগামীকাল শুক্রবার দেশব্যাপী মিছিল ও গণসংযোগ কর্মসূচির ঘোষণা দেন। রিজভী বলেন, 'বাংলাদেশে যে সেটআপ আছে, সেটা দিয়ে কখনোই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হয়। এখানে যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সিভিল প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন-এটা শেখ হাসিনার সাজানো সেটআপ। এই সেটআপ দিয়ে অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হবে না। এটা এখন প্রতিদিন প্রমাণিত হচ্ছে।' 'নির্বাচন কমিশনারদের কথাবার্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকাণ্ড দেখে বোঝা যাচ্ছে যে তারা নিজেরাই নির্বাচন করিয়ে দিতে চাচ্ছে,' বলেন তিনি। 'দেশের ৬৩টি দল এই তামাশার নির্বাচন বর্জন করেছে' জানিয়ে রিজভী বলেন, 'আমাদের নির্বাচন বর্জনের ডাক সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেছেন যে নাগরিকদের একটি বড় অংশ নির্বাচন বর্জন করেছে। সরকার দলগুলোর দাবি পূরণ করেনি।' তিনি বলেন, 'কে এমপি হয়ে সম্পদ আরও বাড়াবে এজন্য মরিয়া হয়ে গেছে ট্রাক মার্কা, নৌকা মার্কা। এরা তো সবই আওয়ামী লীগের লোক। তাও নিজেরা মারামারি করে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। শেখ হাসিনার অনুচররা উঠে পড়েছে কে সিলেকশনের এমপি হবে।' 'ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেন যে স্যাংশনের জন্য অপেক্ষায় আছেন। আমি বলি, ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনারা আরও লুটপাটের অপেক্ষায় আছেন। আপনার লোকেরা এতদিন যে সম্পদ পাচার করেছে, যেভাবে ব্যাংক লুট করেছে, বড় লুটপাটের সুখস্বপ্নে তারা এখন মিথ্যাচারের নির্বাচন করতে যাচ্ছেন,' যোগ করেন তিনি। এদিকে, বিএনপির তিনদিনের লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচি শেষ হতে যাচ্ছে আজ। আরওশেখ হাসিনা ভিসা নীতির তোয়াক্কা করে না: কাদের
সাজানো সেটআপ দিয়ে অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শেখ হাসিনা ভিসা নীতির তোয়াক্কা করে না: কাদের
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনা আটলান্টিকের ওপাড় থেকে নিষেধাজ্ঞার ভয় পান না। তিনি ভয় পান একমাত্র সৃষ্টিকর্তাকে। কাদের আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণ আমাদের একমাত্র শক্তির উৎস। কোনো বিদেশি শক্তির হুমকি-ধমকির আমরা পরোয়া করি না। ছাত্রলীগের ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। কাদের বলেন, '৭ জানুয়ারি খেলা হবে। ৭ তারিখে ফাইনাল খেলা। বিএনপি কোথায়? কোথায় পালিয়েছে? পালিয়েছে কেন? ফাউল করে লাল কার্ড। এখন বোমা মারবে। তারেক রহমান টেমস নদীর ওপাড় থেকে নির্দেশ দিয়েছে, বোমা মেরে আতঙ্ক সৃষ্টি করবে।' বিএনপির আন্দোলন ভুয়া মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'বিএনপির একদফা, ৩২ দল ভুয়া। কিছুই মানে না পাবলিক।' নতুন ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'নতুন বছরে তোমাদের জন্য শেখ হাসিনার উপহার এক কোটি কর্মসংস্থান।' কাদের বলেন, 'একটা অনুরোধ করে যাই, ছাত্ররাজনীতিকে সাধারণ ছাত্রদের মাঝে আকর্ষণীয় করতে হবে। আজকে ছাত্রলীগের সাধারণ সভা, শুধু ছাত্রলীগ থাকবে, সাধারণ ছেলে-মেয়েরা থাকবে না—সেটা অর্থহীন। 'সাধারণ ছেলে-মেয়েদের বোঝাতে হবে, এই দেশ ভালো লোকদের হাতে থাকলে ভালো হবে। খারাপ লোকদের হাতে থাকলে, ভালো লোকেরা না আসলে রাজনীতি মূল্যহীন হয়ে পড়বে। রাজধানীতে মেধাবীদের আসতে হবে। তা না হলে দেশের রাজনীতি মেধাশূন্য হয়ে যাবে। চরিত্রবানদের রাজনীতিতে আসতে হবে, না হলে রাজনীতি চরিত্রহীন হয়ে পড়বে,' বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি আরও বলেন, 'ভালো লোক এমপি হলে, মন্ত্রী হলে, দেশ ভালো চলবে। খারাপ লোকের হাতে দেশের দুঃশাসন অনিবার্য। এ কথাটা মনে রাখতে হবে।' ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নিয়মতান্ত্রিক জীবন কাটানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, 'রাত ৮-৯টা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ অফিসে ছাত্রলীগের আড্ডা দেওয়ার দরকার নাই। পড়াশোনা করো। যতই পড়বে, ততই শিখবে, ততই জানবে। নেতৃত্বের কোয়ালিটি অর্জন করতে হবে পড়াশোনা করে।' চিরতরে বিএনপিকে লাল কার্ড দেখাতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'ওরা অপেক্ষায় আছে আটলান্টিকের ওপাড় থেকে নিষেধাজ্ঞা আসবে। শেখ হাসিনা ভিসা নীতির তোয়াক্কা করে না। শেখ হাসিনা আটলান্টিকের ওপাড় থেকে নিষেধাজ্ঞার ভয় পান না। তিনি ভয় পান একমাত্র সৃষ্টিকর্তাকে। তিনি ভালোবাসেন বাংলাদেশের জনগণকে। বাংলাদেশের জনগণ আমাদের একমাত্র শক্তির উৎস। কোনো বিদেশি শক্তির হুমকি-ধমকির আমরা পরোয়া করি না। এটা শেখ হাসিনার কথা।'
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনা আটলান্টিকের ওপাড় থেকে নিষেধাজ্ঞার ভয় পান না। তিনি ভয় পান একমাত্র সৃষ্টিকর্তাকে।
বিএনপি-জামায়াত আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে লিফলেট বিতরণ করছে: ওবায়দুল কাদের
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত এখন আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে লিফলেট বিতরণ করছে। তারা ব্যর্থতা ও ভুলের চোরাবালিতে আটকে গেছে। এখান থেকে তারা বেরুতে পারছে না। তাদের নেতিবাচক কর্মসূচি, নাশকতা, অবরোধ জনগণ অগ্রাহ্য করেছে। আজ বুধবার ওবায়দুল কাদের ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বিএনপি সহিংসতা করবে না বললেও সেটা সত্যি কিনা সেটা বলার সুযোগ নেই। কারণ, তারা বলে একটা, করে আরেকটা। খবর পাচ্ছি তারা ভেতরে ভেতরে ষড়যন্ত্র করছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, 'নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ও কর্তৃত্বপূর্ণভাবে ভূমিকা রাখতে পারছে বলেই নির্বাচনী আচরণবিধি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। ইসি স্বাধীনভাবে কাজ করছে বলেই নির্বাচনের স্বচ্ছতা দৃশ্যমান হচ্ছে। এখানে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো হস্তক্ষেপ হচ্ছে না।' 'যেখানেই নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে, সেখানেই নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নিচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ বা তাদের কর্তব্য পালনে বাধা দেওয়া হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর।' যেকোনো মূল্যে আওয়ামী লীগ অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ নির্বাচনের মধ্যদিয়ে গণতন্ত্র আরও সুসংহত হবে। আশা করি, বিশ্ববাসী ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে একটা ভালো নির্বাচন প্রত্যক্ষ করবে। যেখানে জনমত বিজয়ী হবে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দ্বিমুখী ভূমিকার সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ড. মোহাম্মদ ইউনুসের মামলার রায় নিয়ে বাংলাদেশের মানবতা নিয়ে কথা বলেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। বাংলাদেশের শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের মামলায় রায় দেওয়া নিয়ে তাদের মাথাব্যথা। কিন্তু ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েল যে হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে সে বিষয়ে কেন কথা বলছে না। তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একটা কথাও বলেনি। নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, ১১ দেশের ৮০ জন পর্যবেক্ষক আসবেন। এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের প্রতিনিধিরা এসেছেন। বিভিন্ন দেশ থেকে ৫০ জন সংবাদকর্মীও আসবেন। ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টায় কমনওয়েলথের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হবে। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত এখন আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে লিফলেট বিতরণ করছে। তারা ব্যর্থতা ও ভুলের চোরাবালিতে আটকে গেছে। এখান থেকে তারা বেরুতে পারছে না। তাদের নেতিবাচক কর্মসূচি, নাশকতা, অবরোধ জনগণ অগ্রাহ্য করেছে।
বরিশালে লিফলেট বিতরণকালে পুলিশের লাঠিচার্জ, বিএনপির ১০ নেতাকর্মী আহত
বরিশালে ভোট বর্জনসহ অসহযোগ আন্দোলনের লিফলেট বিতরণকালে পুলিশের লাঠিচার্জে বিএনপির ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আজ বুধবার সকাল ১১টার দিকে নগরীর সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। এসময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হোসেন খানসহ ৭ নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ।   আটক অন্যরা হলেন, আমিনুর রহমান টুটু, আল আমিন, হৃদয় হোসেন তামিম, রিয়াজ হোসেন, সুজন আকন ও সাইফুল ইসলাম। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপি নেতাকর্মীরা লিফলেট বিতরণ করতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে তর্ক ও পরে ধস্তাধস্তি হয়। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ এসে নেতাকর্মীদের লাঠিচার্জ করে। পরে ধাওয়া দিয়ে তাদের কর্মসূচি পণ্ড করে দেয়। এসময় বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। বিএনপির আইনজীবী ফোরামের সদস্য হাফিজ আহম্মেদ বাবলু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কোর্ট চত্বরে ভোট বর্জনের লিফলেট বিতরণের পর মানববন্ধন শেষে আমরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে আসি। সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে লিফলেট বিতরণ করতে চাইলে পুলিশ এসে বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে আমাদের অন্তত ১০ নেতাকর্মী আহত হন।' বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার মো. আলী আশরাফ ভূঁইয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পূর্বানুমতি না নিয়ে সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নেওয়ায় বিএনপি নেতাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তারা তা না মেনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে সড়ক থেকে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়।' ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির ৭ নেতাকর্মীকে আটকের তথ্য নিশ্চিত করে বরিশাল কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিচুল হক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।'
বরিশালে ভোট বর্জনসহ অসহযোগ আন্দোলনের লিফলেট বিতরণকালে পুলিশের লাঠিচার্জে বিএনপির ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত পিছিয়েছে
প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন সংক্রান্ত রুলের শুনানি আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট। ফখরুলের আইনজীবী ওয়ালিউর রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নুরুদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এই আদেশ দেন। বিএনপি সমর্থিত কোনো সিনিয়র আইনজীবী ফখরুলের পক্ষে হাইকোর্ট বেঞ্চে হাজির হননি কারণ বিভিন্ন দাবিতে ১ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে তারা আদালত বয়কট পালন করছেন। গত ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মামলায় ফখরুলকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা সাত দিনের মধ্যে জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। গত ৩ ডিসেম্বর ফখরুল তার আইনজীবীদের মাধ্যমে হাইকোর্টে জামিনের আবেদন জানিয়ে বলেন, তিনি কোনোভাবেই প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত নন। তিনি একজন বয়স্ক ব্যক্তি এবং হার্টের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন বলেও জানান তিনি। গত ২৯ অক্টোবর রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় ফখরুলকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকে বিএনপি নেতা কারাগারে বন্দী। গত ২২ নভেম্বর ঢাকার একটি আদালত এ মামলায় তাকে জামিন নামঞ্জুর করেন। গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতার সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুর করা হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল বিএনপি। সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠানে অটল রয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন সংক্রান্ত রুলের শুনানি আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট।
বিএনপির লোকজনের ‘হাত-পা ভেঙে পুলিশে’ দিতে বললেন আ. লীগ নেতা
নির্বাচন বর্জনের দাবিতে বিএনপির লোকজনকে লিফলেট বিতরণ করতে দেখলে তাদের 'হাত-পা ভেঙে পুলিশে দেওয়ার' নির্দেশ দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জসিম উদ্দিন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় দেলপাড়া গোলাপবাগ এলাকায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের পক্ষে এক নির্বাচনী উঠান বৈঠকে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশনা দেন। তার এমন বক্তব্যের ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বক্তব্যে আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিন বলেন, 'আগামী ৭ তারিখে জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচন বানচাল করতে বিএনপি পায়তারা করছে। এলাকায় যারা বিএনপি করে তারা মাঝে মাঝে দেখি বাড়ি-বাড়ি গিয়ে হ্যান্ডবিল দেয়। ফেসবুকে দেখলাম, দেলপাড়া বাজারেও তারা (হ্যান্ডবিল) দিয়েছে। ' 'আমি আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দকে বলব, যদি তাদের এই অবস্থায় (হ্যান্ডবিল বিতরণ অবস্থায়) পাওয়া যায় তাহলে হাত-পা ভেঙে পুলিশের হাতে তুলে দেবেন। আর না হলে আপনারা ওদের আটকে আমাদের খবর দেবেন, আমি আসব,' বক্তব্যে বলেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা। এ নির্বাচনী উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন। আরও উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম, কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মানিক চাঁন। বিএনপি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে সভায় জসিম উদ্দিন বলেন, '২০০১ সালের নির্বাচনের পরে আওয়ামী লীগের লোকজনের ওপর অনেক অত্যাচার নির্যাতন করছে, সেইটা ভোলার মতো না। কিন্তু আমাদের নেত্রী নির্বাচনে জেতার পরদিন বলেছিলেন, কোনো আনন্দ-উল্লাস করা যাবে না এবং কোনো বিএনপির লোকের ওপর কোনো আঘাত করা যাবে না। শামীম ওসমানের নির্দেশ যখন আসলো, আমরা আমাদের এলাকাগুলোতে গিয়ে কারও উপর জুলুম-অত্যাচার না করার নির্দেশ দিয়েছি।' তিনি আরও বলেন, 'এই কুতুবপুরে বিএনপির লোকেরা ১৫ বছর ব্যবসা-বাণিজ্য কইরা যাইতেছে। আগামী নির্বাচনের পরে শেখ হাসিনা সরকার গঠন করবে, নির্বাচনের পর যতটুক ব্যবস্থা নেওয়ার আমরা নেবো। বিএনপির লোকজন কীভাবে এলাকায় থাকে আর ব্যবসা করে সেইটা আমরা দেখব। শামীম ওসমান একটাই নির্দেশ দিয়েছেন, নির্বাচনে কাউকে কিছু বলবেন না। নির্বাচনের পর ব্যবস্থা আমরা নেবো। কারণ আমরা বহু সহ্য করেছি, আর না।' ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য দলের পক্ষ থেকে পরিবহনের ব্যবস্থা থাকবে বলেও জানান এই আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি বলেন, '৭ তারিখে ভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য পরিবহন ব্যবস্থা থাকবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে নেতাকর্মীরা অটোরিকশার ব্যবস্থা করবে। তারা আপনাকে কেন্দ্রে নিয়ে যাবে, আবার নিয়ে আসবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার নিতে হবে।' এ বক্তব্যের বিষয়ে জানতে বিকেলে আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিনকে আজ মঙ্গলবার বিকেলে ফোন করা হলে, তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি এখন ব্যস্ত আছি। কথা বলতে পারব না।' সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কল করা হলেও, তিনি একই কথা বলে কল কেটে দেন। তবে, এ বিষয়ে জানতে সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিনকে বলেন, 'হাত-পা ভেঙে দেওয়ার কথা আমি খেয়াল করিনি। উনি বলছেন যে, যারা আগুন দিয়ে মানুষ মারে তাদের এবার আর ছাড় দেওয়া হবে না।' হাত-পা ভেঙে দিতে নির্দেশ দেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে, বিষয়টি উল্লেখ করলে নাজিম উদ্দিন বলেন, 'আমি অমন কথা তখন শুনিনি। এ বিষয়ে উনি নিজেই বলতে পারবেন।' যোগাযোগ করা হলে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এমন বক্তব্যের ব্যাপারে পুলিশ অবগত নয়। আপনার কাছ থেকেই জানলাম। এ ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হবে।' উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন বর্জন করে নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে নির্বাচনের আয়োজনের দাবিতে সারাদেশে টানা হরতাল ও অবরোধের পর লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি।
নির্বাচন বর্জনের দাবিতে বিএনপির লোকজনকে লিফলেট বিতরণ করতে দেখলে তাদের 'হাত-পা ভেঙে পুলিশে দেওয়ার' নির্দেশ দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জসিম উদ্দিন।
‘শ্রমিক-কর্মচারীদের মামলায় ড. ইউনূসের শাস্তি হয়েছে, সরকার কোনো পক্ষ নয়’
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের রায় নিয়ে দেশে-বিদেশে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে আদালত দণ্ডিত করেছেন। এরপর আপিল করার শর্তে তাকে আবার জামিনে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে দেশে-বিদেশে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা আছে এবং সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা হচ্ছে। এখানে সরকার কোনো পক্ষ নয়, মামলাও করেনি! মামলা করেছে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীরা। সেই মামলায় শাস্তি হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামের দেওয়ানজী পুকুর লেনে ওয়াইএনটি সেন্টারে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে এক দশকের বেশি সময় ধরে নিয়ম ভঙ্গ, কর ফাঁকি, কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিল আত্মসাৎ এবং বিভিন্ন অনুমোদিত সংস্থা থেকে তিন হাজার কোটি টাকা অপব্যবহার করার অভিযোগ আছে। ১৯৮৩ সালের গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ অনুসারে, গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি সরকার নিযুক্ত হওয়ার কথা ছিল। ১৯৯০ সালের সংশোধনী অনুসারে এমডি নিয়োগের দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টরসে স্থানান্তরিত হয়। এই পরিচালক বোর্ডের চেয়ারম্যান ওই বছরের ১৪ আগস্ট ড. ইউনূসকে এমডি হিসেবে নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের জন্য অনুরোধ করেন, বলেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক শর্ত সাপেক্ষে ড. ইউনূসের নিয়োগে অনাপত্তি দেয়, শর্তগুলো হচ্ছে—এমডির চাকরির শর্তাবলী ১৯৮৩ সালের গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ ১৪ এর ৪ ধারার প্রবিধান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে; পরিচালক বোর্ড অধ্যাদেশের ৩৬ ধারার অধীনে নিয়ম তৈরি করবে, যা সরকারি গেজেট প্রকাশের পর কার্যকর হবে এবং সরকারি চাকরির নিয়ম অনুসারে, একজন এমডি ৬০ বছর বয়সের সীমা অতিক্রম করতে পারবেন না। কিন্তু ড. ইউনূসের বয়স যখন ৫৯ বছর, ১৯৯৯ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত পরিচালক বোর্ড তার ৫২তম সভায় আইন ভঙ্গ করে রেজুলেশনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পরবর্তী আদেশ না হওয়া পর্যন্ত এমডি হিসেবে নিশ্চিত করে। এটি গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশের অনুচ্ছেদ ১৪ এর ৪ ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তার এই নিয়োগের অসৎ উদ্দেশ্য পরে প্রমাণিত হয়েছে, যোগ করেন তিনি। হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ২১ এবং ১২ এর ২ ধারা অনুসারে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডিকে একজন পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেখানে ড. মুহাম্মদ ইউনূস পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে তার চাকরির শর্তাবলী লঙ্ঘন করেছেন। একজন পূর্ণ সময়ের সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে কাজের জায়গায় তার ঘন ঘন অনুপস্থিতি ছিল এবং সেই অনুপস্থিতির ক্ষেত্রে সরকারের অনুমোদন কখনো নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনুসের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট, তার পরিবারের সঙ্গে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেক প্রতিষ্ঠানে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে বা মূলধন জোগান দেওয়া হয়েছে। এসব কারণেই তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে শাস্তি হয়েছে। পৃথিবীতে বহু নোবেল লরিয়েটের বিরুদ্ধে দেশে দেশে মামলা হয়েছে, অনেকে শাস্তি ভোগ করেছেন, কারাগারেও ছিলেন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের অনেক ঘটনা আছে, যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, পুরস্কারের অর্থ কে কত টাকা পাবেন—এ নিয়েও নোবেল লরিয়েট একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোনো সুযোগ নাই। বাংলাদেশে আদালত স্বাধীন, স্বাধীনভাবেই কাজ করেছে।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের রায় নিয়ে দেশে-বিদেশে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
২৮ অক্টোবর গভীর খাদে পড়ে গেছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের
আগামী ৭ জানুয়ারি বিএনপিকে লালকার্ড দিয়ে চিরতরে বিদায় জানাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, 'বিএনপি স্বাধীনতা বিরোধী, দুর্নীতিবাজ, ষড়যন্ত্রকারী। এদেরকে লালকার্ড দেখিয়ে বের করে দিতে হবে। তাদের স্থান বাংলার মাটিতে হবে না। যারা আমার প্রিয় জন্মভূমিকে পাকিস্তান বানাতে চায়, আফগানিস্তান বানাতে চায়, তাদের স্থান বাংলার মাটিতে হবে না।' ওবায়দুল কাদের আজ সোমবার বিকেলে কলাবাগান মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় এ কথা বলেন। জনসভায় আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি পালিয়ে গেছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, '৭ তারিখ খেলা হবে। জোরদার খেলা হবে। আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে খেলা হবে। লুটপাটের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে খেলা হবে। অবরোধের বিরুদ্ধে খেলা হবে। তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে খেলা হবে। এ তারেক বাংলাদেশের কলঙ্কিত সন্তান। এই তারেকের বিরুদ্ধে একসঙ্গে খেলা হবে।' ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিএনপি কোথায়? মাঠে আছে? পালিয়ে গেছে। লালকার্ড খেয়ে বাদ। ফাউল করে লালকার্ড খেয়েছে। ২৮ তারিখেই বাদ হয়ে গেছে। ২৮ তারিখে গভীর খাদে পড়ে গেছে বিএনপি। ফাইনাল খেলা ৭ জানুয়ারি। সেদিন এদের চিরতরে লালকার্ড দিয়ে বিদায় জানাতে হবে।'
আগামী ৭ জানুয়ারি বিএনপিকে লালকার্ড দিয়ে চিরতরে বিদায় জানাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
অগ্নিসংযোগের প্রতিটি ঘটনার নির্দিষ্ট প্যাটার্ন আছে, আ. লীগ যার বেনিফিশিয়ারি: বিএনপি
চলমান অগ্নিসংযোগের প্রতিটি ঘটনায় একটি সুনির্দিষ্ট প্যাটার্ন দেখা যাচ্ছে, যার একমাত্র বেনিফিশিয়ারি আওয়ামী লীগ বলে মনে করছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। আজ রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের দুটি নির্বাচনের পটভূমিতে আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে একটি প্রহসনমূলক ও সহিংস কারচুপির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিবৃতিতে বলা হয়, 'তথাকথিত এই "ডামি নির্বাচন" সামনে রেখে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় যে নাশকতা চলছে, তাতে শুধু গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাই নন, নিপীড়ন-নিষ্পেষণের শিকার হচ্ছেন খেটে খাওয়া, প্রান্তিক মানুষ। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কাঠামোতে, বিশেষত বাস-ট্রেনে পরিকল্পিত হামলার মাধ্যমে, জনগণের জানমাল ও নিরাপত্তা-স্বাধীনতা বিনষ্ট করছে আওয়ামী লীগ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একাংশ।' এতে আরও বলা হয়, 'চলমান অগ্নিসংযোগের প্রতিটি ঘটনায় একটি সুনির্দিষ্ট প্যাটার্ন লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যার একমাত্র বেনেফিশিয়ারি আওয়ামী লীগ ও তার অধীনস্থ রাষ্ট্রযন্ত্র, আর প্রধান ভুক্তভোগী বিএনপি। ক্ষমতাসীন শীর্ষ নেতৃত্ব ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কোনো তদন্ত, তথ্য বা সূত্র ছাড়াই প্রতিটি ঘটনার পরপর অগ্নিসন্ত্রাসের দায় বিএনপির ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে।' 'নিজেদের সুপরিকল্পিত এই ধ্বংসযজ্ঞকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে অপব্যবহার করে তারা রাষ্ট্রীয় দমন-নিপীড়নকে উস্কে দিচ্ছেন, যা শেখ হাসিনার প্রতিহিংসামূলক বক্তব্যে বারবার প্রমাণিত হয়েছে। আমরা এর আগে তার কিছু সহিংস দিকনির্দেশনা দেখেছি, যেখানে বিএনপির সব নেতাকর্মীর হাত পুড়িয়ে ফেলা ও ভেঙে দেওয়া, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পদ্মা সেতু থেকে ফেলে দেওয়া, নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে পদ্মা নদীতে চুবিয়ে আনা,' বলা হয় বিবৃতিতে। গত ১৯ ডিসেম্বর ঢাকায় চলন্ত ট্রেনে অগ্নিসংযোগে ৪ যাত্রী মারা যাওয়ার ঘটনার উল্লেখ করে বিএনপি জানায়, 'ওই ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, রাষ্ট্রের একটি চিহ্নিত অংশের যোগসাজশে এ নাশকতা সংঘটিত হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের দুইদিন আগে ১৯ ডিসেম্বরের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে বিশেষভাবে সরকারি হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত শয্যা, জরুরি সেবা, ডাক্তার ও অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখার জন্য ডিএমপি নির্দেশনা দিয়েছিল। বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ আছে যে, এই নির্দেশনাটি কোনো কাকতালীয় বিষয় নয়। ডিএমপির এই প্রস্তুতিমূলক উদ্যোগ কেন নেওয়া হয়েছিল, নাশকতার সুস্পষ্ট তথ্য ও পরিকল্পনা তাদের কাছে কীভাবে এলো এবং তারপরও এটি রোধে কেন তারা কোনো ব্যবস্থা নিলেন না, জনমনে এসব প্রশ্ন আছে।' 'অথচ, আমরা গভীর হতাশার সঙ্গে দেখলাম, ঘটনার পরপরই ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান দাবি করে বসলেন, বিদেশে অবস্থানরত নেতাদের নির্দেশে এই হামলা হয়েছে এবং এর জন্য বিএনপিই দায়ী। কোনোরূপ তদন্ত বা প্রমাণ ছাড়াই, নিজেদের ব্যর্থতা বা সম্পৃক্ততাকে আড়াল করতে, পুলিশের একজন দায়িত্ববান ব্যক্তি কীভাবে আওয়ামী লীগের সাজানো বক্তব্যের প্রচারণায় অংশ নেন, তাতে দেশবাসী হতবিহ্বল। তার এই আপত্তিকর বক্তব্য মূলত সজীব ওয়াজেদ জয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম অর্থাৎ আওয়ামী লীগের বক্তব্য একই অভিযোগেরই প্রতিধ্বনি। দুর্ভাগ্যক্রমে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং রাষ্ট্রযন্ত্রের সমর্থনে আওয়ামী লীগের চিরন্তন "ব্লেম গেম পলিটিক্সকে" আবার জনসমক্ষে নিয়ে এসেছে,' বলা হয় বিবৃতিতে। বানোয়াট অভিযোগের উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, 'বিএনপি যতবার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, আওয়ামী লীগ একইদিনে পরিকল্পিত নাশকতার উদ্দেশে কর্মসূচি আহবান করে। আমরা দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সর্বদা একটি অহিংস আন্দোলন বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছি এবং সব উস্কানি এড়ানোর আহ্বান জানিয়েছি। গত ২৮ অক্টোবর আমরা ঢাকায় একটি মহাসমাবেশের আয়োজন করেছিলাম, যেখানে সারাদেশ থেকে গণতন্ত্রকামী লাখো মানুষ যোগ দিয়েছিলেন। নানা প্রতিকূলতা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে, জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আবারও প্রমাণ করেছিল, বিএনপির পক্ষে ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে এবং একটি সত্যিকারের নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের বিব্রতকর পরাজয় অনিবার্য। আর তাই, আমাদের মহাসমাবেশকে বানচাল ও চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে, সেদিন একটি ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে পুলিশের চিহ্নিত অংশ।' বিএনপির বক্তব্য, 'মুখোশধারী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পুলিশের সহায়তায় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালায় এবং পুলিশ হাসপাতালের সামনে বাস ও গাড়িতে আগুন দেয়। তারা প্রকাশ্য দিবালোকে এক পুলিশ সদস্যকে হত্যাও করে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে পুলিশের কেউ তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেনি, যা ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা গেছে। এই নৃশংসতার পর, বিএনপির নেতৃত্বে গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলসমূহ, ফ্যাসিবাদী অপশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে জোরদারের প্রস্তুতি নিলে, আওয়ামী লীগ ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দেশজুড়ে যানবাহনে অগ্নিসংযোগের এক নোংরা কৌশল অবলম্বন করে। অগ্নিসংযোগের ঘটনা বন্ধ করতে বা প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তারে ইচ্ছাকৃত নিষ্ক্রিয়তা প্রমাণ করে যে পুলিশের সহযোগিতায় ও পরিকল্পিতভাবে এই হামলাগুলো চালানো হচ্ছে।' পরবর্তীতে এসবের দায় বিএনপির ওপর চাপিয়ে দলের লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, প্রায় ২৫ হাজার গণগ্রেপ্তার ও ২৭ নিরপরাধ মানুষকে হত্যার ঘটনা বিশ্লেষণে আওয়ামী লীগের বৃহৎ ষড়যন্ত্রের আলামত স্পষ্ট বলে দাবি করেছে বিএনপি। বিবৃতিতে বলা হয়, 'আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিজেরা তালিকা করে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় বিএনপি নেতাকর্মীদের আটক করছে। অগ্নিসন্ত্রাসের বানোয়াট অভিযোগে তারা ছাত্রদল ও যুবদলের সদস্যদের টার্গেট করছে, মিথ্যা মামলায় ফাঁসাচ্ছে।' হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিএনপি জানায়, 'আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের কীভাবে কঠোর আঘাত, বৈদ্যুতিক শক, ওয়াটারবোর্ডিং, পঙ্গু করার জন্য গুলি, হাঁটুতে মারাত্মক প্রহার করে মিথ্যা স্বীকারোক্তি ও সাক্ষ্য আদায় করা হয়। পুলিশ হেফাজতে অবর্ণনীয় নির্যাতন ও ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে বিএনপির সদস্যদের কাছ থেকে জবরদস্তিমূলক মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে। পরবর্তীতে একটি পরিকল্পিত মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সংঘটিত নাশকতায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সংশ্লিষ্টতার জোরপূর্বক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নিয়মিত মিডিয়ায় হাজির হচ্ছেন এবং বিএনপি অগ্নিসংযোগে লিপ্ত থাকার বানোয়াট গল্প ছড়াচ্ছেন।' 'এই অপরাজনীতি আজ দেশে-বিদেশে সবার কাছে স্পষ্ট' উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'বানোয়াট অভিযোগ ও গায়েবি মামলা সাজানো হচ্ছে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার পুনরুদ্ধারে বিএনপির আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিচার বিভাগের যৌথ উদ্যোগ সরকারের মাস্টারপ্ল্যানের অংশ। এটি আজ দৃশ্যমান যে, সরকার একটি সিস্টেম্যাটিক ফর্মুলা অনুসরণ করছে। প্রথমে তারা মিডিয়া কভারেজ দিয়ে নাশকতার ঘটনা তৈরি করে। এরপর বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তির ওপর দায় চাপিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে তারা রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রায় দেয় ও আমাদের চলমান আন্দোলনকে বিতর্কিত করার একটি হীন প্রচারণা চালায়।' 'এই পরিকল্পনায় দেশব্যাপী অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি এবং এই নাশকতাগুলোকে একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে আন্দোলনকে স্তিমিত করে দেওয়া। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতিনিধিত্বকারী দল বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ সম্মিলিতভাবে অগ্নিসংযোগ করছেন, অবিশ্বাস্য এই হীন অপবাদ চাপিয়েই পুলিশ কাল্পনিক মামলা এবং বানোয়াট অভিযোগ নথিভুক্ত করে চলেছে। এমনকি ইতোমধ্যে বিএনপির যেসব সদস্য মারা গেছেন বা গুমের শিকার হয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করা হচ্ছে। কোনো নিরপেক্ষ বা স্বাধীন সাক্ষী ছাড়াই মিথ্যা পুলিশি সাক্ষ্যকে একমাত্র প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে বিচার বিভাগের ধারাবাহিক অবিচারের মাধ্যমে, পূর্বপরিকল্পিত এই রায়গুলো আইনের অনুশাসনের সার্বিক অবক্ষয়কে প্রমাণিত করে তুলছে,' যোগ করা হয় এতে। বিবৃতিতে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার সাম্প্রতিক ঘটনা, অতীতের কিছু ঘটনা এবং নির্বাচনী সহিংসতা ও ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখানোর কিছু উদাহরণ দিয়ে বিবৃতিতে বিএনপি জানায়, '৭ জানুয়ারির আসন্ন সাজানো নির্বাচনের তথাকথিত ফলাফল ইতোমধ্যে পূর্বনির্ধারিত। নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের সব রাজনৈতিক দল। নির্বাচনের নেই কোনো বৈধতা বা জনসম্পৃক্ততা। এই প্রহসনের নির্বাচনকে সহিংসতায় রূপ দিয়ে নিজেদের সন্ত্রাসী পরিচয়ের যৌক্তিকতা প্রমাণ করে চলেছে আওয়ামী লীগ। প্রতিপক্ষের কর্মী-সমর্থকদের হাত-পা ভেঙে দেওয়া, নির্দিষ্ট প্রতীকে ভোট না দিলে সামাজিক সুরক্ষার আওতায় বিভিন্ন ভাতা বন্ধ করে দেওয়া, পক্ষে কাজ না করলে এলাকায় থাকতে না দেওয়া, এ ধরনের নানা হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা।' 'সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতার অস্বীকৃতি, দুঃশাসন, দুর্নীতি ও নৃশংসতার কারণে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ থেকে আওয়ামী লীগ আজ বিচ্ছিন্ন। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রযন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য মরিয়া চেষ্টা করছে, কেননা জনগণ অর্থবহ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ চায়। প্রহসনমূলক নির্বাচনের তথাকথিত প্রচারণার সময় আওয়ামী লীগ নেতারা খোলাখুলি স্বীকার করছেন যে, তারা ২০১৪ ও ২০১৮ সালে ভোট কারচুপির সঙ্গে জড়িত ছিল। আবার একই নাটক মঞ্চস্থ করতে তাদের রাষ্ট্রযন্ত্রের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে, এটিই স্বাভাবিক,' বলা হয় বিবৃতিতে। 'বিএনপির রাজনৈতিক শক্তি জনগণের সমর্থন' উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'বিএনপির শান্তিপূর্ণ ও অহিংস আন্দোলন এই বিশ্বাসের সঙ্গে বিকশিত হয়েছে যে, প্রতিটি জীবন মূল্যবান, এবং আমরা জনগণের নিরাপত্তা রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আওয়ামী লীগের ধারাবাহিক অগ্নিসন্ত্রাসের ঘটনায় নিরীহ মানুষের প্রাণহানির তীব্র নিন্দা জানাই, এবং নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করি। আমরা বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোর নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে সৃষ্ট চলমান যে নৈরাজ্য, ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার এই অপকৌশল বাংলাদেশে সফল হবে না।'
চলমান অগ্নিসংযোগের প্রতিটি ঘটনায় একটি সুনির্দিষ্ট প্যাটার্ন দেখা যাচ্ছে, যার একমাত্র বেনিফিশিয়ারি আওয়ামী লীগ বলে মনে করছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি ৯ জানুয়ারি
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে নয়টি মামলায় জামিন আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ৯ জানুয়ারি তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এ আদেশ দেন। মির্জা ফখরুলের আইনজীবী শেখ শাকিল আহমেদ রিপন দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় এসব মামলা করা হয়েছিল। এসব মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে গত বৃহস্পতিবার আবেদন করেছিলেন মির্জা ফখরুল। এর আগে মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদন গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন আদালত। এ সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে ৯ মামলায় ফখরুলের জামিন আবেদন গ্রহণ, শুনানি ও নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পুলিশ কনস্টেবলকে হত্যা, রাস্তায় অবৈধ জমায়েত, যানবাহন ভাঙচুর, তাণ্ডব, পুলিশের অস্ত্র ছিনতাই, সম্পদের ক্ষতি, পুলিশ সদস্যদের লাঞ্ছিত এবং দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পল্টন ও রমনা থানায় এসব মামলা করা হয়। ২৮ অক্টোবর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় গত ২৯ অক্টোবর ফখরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে নয়টি মামলায় জামিন আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ৯ জানুয়ারি তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত।
বিএনপি নেতা রিজভীকে খুঁজছে পুলিশ: ডিবি প্রধান
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীকে পুলিশ খুঁজছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। আজ রোববার দুপুরে তার কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না জানতে চাইলে হারুন গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, 'আমরা তো জানি সে অসুস্থ। একজন অসুস্থ মানুষ, তারপরও মাঝে মাঝে হঠাৎ করে তিনি যেসব কথা বলেন, সেগুলো আমরা আসলে তদন্ত করছি। আমরা খুঁজছি তাকে, কারণ তার বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা আছে। আমরা তাকে খুঁজছি এবং আমরা শিগগির তাকে গ্রেপ্তার করব।' তিনি আরও বলেন, 'উনি (রিজভী) হঠাৎ করে বের হয়ে যে ধরনের কথা বলেন, এটা সংবিধানবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী, দেশবিরোধী। উনি লিফলেট বিতরণ করছেন আর মানুষকে বলছেন...লিফলেট দেখলেই বুঝবেন সেখানে কী ধরনের কথা বলা আছে। এটা উনার মতো একজন মানুষ বলতে পারেন না।' ডিবি প্রধান আরও বলেন, 'বিএনপি নেতাকর্মীরা ২৮ অক্টোবরের পর থেকে একদিকে তারা যানবাহন ভাঙচুর, বোমা বিস্ফোরণ, রেলের বগিতে আগুন, রেলের স্লিপার চুরি করে দুর্ঘটনায় ফেলে দেওয়া; অনেক জঘন্য কাজ তারা করছে। তাদের উদ্দেশ্য জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে নির্বাচনের পরিবেশ ভণ্ডুল করা। 'তারা কিন্তু সে কাজটি করেছে, অনেকগুলো গাড়িতে আগুন লাগিয়েছিল, আমাদের পুলিশ সদস্যকে তারা হত্যা করেছিল, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করেছিল। সব কিছু করেও যখন দেখল মানুষ নির্বাচনমুখী। তফসিল অনুযায়ী মানুষ নির্বাচনী আমেজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে, তখন তারা বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে যেটা করল, বিভিন্ন জায়গায় তারা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে যে, নির্বাচন যে কোনো সময় বন্ধ হয়ে যাবে,' বলেন হারুন। তিনি আরও বলেন, 'আপনারা কর পরিশোধ করবেন না; কেন্দ্রে যাবেন না—বিভিন্ন ধরনের কুমন্ত্রণা দিয়ে যাচ্ছেন তারা, যেটা আমি মনে করি সংবিধানবিরোধী।' হারুন বলেন, 'এখন যারা বিভিন্ন ধরনের প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে বিভিন্ন ধরনের লিফলেট বিতরণ করছে; তারা ককটেল বিস্ফোরণ করছে, বিভিন্ন জায়গা থেকে গানপাউডার নিয়ে আসছে, আমরা সেগুলো উদ্ধার করেছি। এ ধরনের প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে গিয়ে মানুষকে কুমন্ত্রণা দিয়ে নির্বাচনী পরিবেশ বিনষ্ট করার যে অপচেষ্টা, আমরা; আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন কমিশনের দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী কখনোই এ ধরনের অপচেষ্টাকে বরদাস্ত করব না।' তিনি বলেন, 'সে লক্ষ্যে আমাদের অভিযান চলমান। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঢাকা ও আশে পাশের এলাকায় একদিকে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করছে, যারা নির্বাচনী পরিবেশ ভণ্ডুল করার চেষ্টা করছে। অনেককে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি, বাকি যারা আছে তাদের নাম-নম্বর আমরা পেয়েছি, তাদেরকে আমরা শিগগির গ্রেপ্তার করব।'
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীকে পুলিশ খুঁজছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
বিএনপি নেতা আলাল-নীরবের ৩ বছরের কারাদণ্ড
নাশকতার মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরবসহ আট জনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বাকি আসামিরা হলেন—জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবদুল কাদের জুয়েল, বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলাম, হারুন উর রশিদ, ওবাদুল হক নাসির ও শহিদুল ইসলাম হীরা। তাদের প্রত্যেককে দণ্ডবিধির ১৪৭ ধারায় এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অনাদায়ে আরও এক মাস বিনাশ্রম কারা ভোগ করতে হবে। এছাড়া ৪৩৫ ধারায় দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর ধানমন্ডি থানার সাত মসজিদ রোডে আসামিরা একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয়। ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল্লাহ আল মামুন ফরাজী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। পরের বছরের ১৫ ডিসেম্বর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবু সাঈদ তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। এই মামলায় ১৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ছয় জনের সাক্ষ্য রেকর্ড করেন আদালত।
নাশকতার মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরবসহ আট জনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বিএনপি কোনো দিন অপজিশন ছিল না, ছিল জাতীয় পার্টি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বিএনপি নয়, জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দল ছিল বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এখন তো বিরোধী দল নেই, স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজেরাই সহিংসতায় জড়াচ্ছে—এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'অপজিশন নেই কে বলছে? বিএনপি কোনো দিন অপজিশন ছিল না। অপজিশন ছিল জাতীয় পার্টি। আমি সব সময় বলি, পার্লামেন্টে যার সংখ্যাধিক্য সিট থাকে সেই অপজিশনে থাকে। সরকারি দলের পরে যাদের সংখ্যাধিক্য থাকে। সে ক্ষেত্রে বিএনপি আজকে ১৫ বছরের মধ্যে কোনো দিন সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হতে পারেনি, বিরোধী দল হতে পারেনি।' বিএনপি সব সময় ষড়যন্ত্র করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'এটাই তাদের কৌশল। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তারা ক্ষমতার রদবদল করতে চায় কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ তাদের নিজস্ব ভোটের মাধ্যমে নতুন সরকার দেখতে চায়। 'আমরা আশা করি, ৭ তারিখে জনগণের ভোটের মাধ্যমে একটি নতুন সরকার আসবে,' বলেন তিনি। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আপনারা কি নির্ভার আছেন? দীর্ঘ দিন ধরে একটি দল নির্বাচন বন্ধ করার জন্য একটি দল কাজ করছে, এখনো মাঠেই আছে। শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করার জন্য কি আপনারা প্রস্তুত—একজন গণমাধ্যমকর্মী জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমাদের নির্বাচন কমিশন প্রস্তুত রয়েছে একটি সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য। আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন, সারা বাংলাদেশে এখন নির্বাচনের আবহাওয়া বিরাজ করছে। সব জায়গায় নির্বাচনমুখী একটা উৎসবের আমেজ এসে গেছে। 'সবাই এখন নির্বাচনমুখী হয়ে গেছে। আপনি যেখানেই যাবেন, গল্প-গুজব যেটা নির্বাচনে আগে হয়ে থাকে সেগুলো চলছে। এই আনন্দমুখর পরিবেশ, একটা টান টান উত্তেজনাও রয়েছে কে পাস করবে, কে হারবে—এগুলো কিন্তু শুরু হয়ে গেছে। কাজেই এখানে সুন্দর একটা নির্বাচন হবে এটাই আমরা আশা করি,' বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, 'কে বললো নির্বাচন করতে দেবে না; এ জন্য এ দেশের জনগণ বসে থাকবে না। এ দেশের জনগণ ঠিক ৭ তারিখে তাদের যে কাজটি অবশ্যই করবে। কারণ এ দেশের মানুষ ২০০১ থেকে ২০০৬ দেখেছে। পঁচাত্তরের পরবর্তী দৃশ্যগুলো তারা দেখেছে। কাজেই মানুষ আর অন্ধকার বাংলাদেশ দেখতে চায় না। মানুষ এগিয়ে যেতে চায়, সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ দেখতে চায়। 'মানুষ আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসেন এবং তারা বিশ্বাস করেন শেখ হাসিনার বিকল্প এ দেশে আর কেউ নেই,' যোগ করেন তিনি। ভোটার উপস্থিতি কেমন হতে পারে বলে করছেন তিনি গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'অবশ্যই ভালো টার্ন-আউট হবে। সারা পৃথিবীর দিকে তাকালে উন্নত দেশগুলোর টার্ন-আউট দেখবেন, সেগুলো ফিগার কী রকম আসে, তার চেয়ে ইনশাল্লাহ অনেক অনেক বেশি হবে।' আইন ও সালিশ কেন্দ্র বলেছে, চলতি বছরে ২০ জন বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে—এ ব্যাপারে গণমাধ্যমকর্মী জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমাদের দেশে একটি মানবাধিকার কমিশন রয়েছে। তারা কী বলে সেটা লক্ষ রাখবেন। বিদেশ থেকে কী বললো, কোথা থেকে কী বললো; তথ্যভিত্তিক কথা অনেক সময় আসে না। এর আগে ৭৮ জন গুম হয়েছে বলে আমাদের কাছে খবর পাঠিয়ে ছিল। আমরা দেখেছি এর মধ্যে ২৫ জন আমাদের বিএনপির রাজনীতি করতে কিংবা কারাগারে আছে কিংবা তারা আত্মগোপন করেছে, বিদেশে পালিয়ে আছে। 'আর অনেকগুলোকে আমরাই খুঁজছি। এগুলো তো গুম নয়। এরা অনেক সময় তথ্যের বাইরেও কিছু কথা বলে থাকেন। যেগুলো তারা হয়তো এখান থেকে কোনো ভুল সংবাদের মাধ্যমে...আমাদের একটা মানবাধিকার কমিশন রয়েছে, তারা কী বলে সেটা লক্ষ রাখবেন,' গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
বিএনপি নয়, জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দল ছিল বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বিএনপি নির্বাচন বন্ধ করতে লাশ ফেলার রাজনীতি করতে চায়: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যারা নির্বাচন নিয়ে অপ্রচার করছে তাদের জবাব দিতে হবে। রোববার দুপুরে তিনি তার নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার চাপরাশির হাট বাজারে নির্বাচনী পথসভায় এ কথা বলেন। তিনি বলেন, 'ইসরাইলে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইল বাহিনী যে বর্বর নির্যাতন করছে তারেক জিয়ার নির্দেশে বাংলাদেশে বিএনপি একই কায়দায় মানুষকে নির্যাতন করছে।' ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আজকে বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে নির্বাচন বন্ধ করতে লাশ ফেলার রাজনীতি করতে চায়।' তিনি বলেন, 'তারা ৭৫-এ ক্যু করেছে, ৭৫-এ খুন করেছে মোস্তাক, জিয়া। জেলখানায় জাতীয় চার নেতাদের হত্যা করেছে। তারেক জিয়া ও খালেদা জিয়ার নির্দেশে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যা ও আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য  করতে চেয়েছিল।' নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে কাদের বলেন, আমি আপনাদের  সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। কোনো প্রার্থী বা কোনো একজন নামী নেতাকে তারেক জিয়া লন্ডন থেকে মারার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। আপনারা এটা প্রতিরোধ করবেন। তিনি বলেন, 'বিদেশি শক্তি আমাদেরকে পরামর্শ দিলে গ্রহণ করব। কিন্তু আমাদের নির্বাচনের ক্ষতি হয় এমন শক্তিকে উসকানি দিলে এটা মেনে নেব না। ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েল যা করছে আজকে বাংলাদেশে বিএনপি তাই করছে। বাংলাদেশের নির্বাচন ঠেকানোর শক্তি কারো নেই।' ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিএনপি বলেছিল শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবে। কিন্তু তিনি গোটা দেশ চষে বেড়াচ্ছেন। শেখ হাসিনা বরিশাল, গোপালগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জনসভা করছেন। আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে চতুর্থবারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন। বিএনপির কাছে আছে গোলাবারুদ আর অস্ত্র আর আমাদের সাথে আছে জনগণ।' পরে দুপুর ১টার দিকে কবিরহাট উপজেলার জনতা বাজারে দ্বিতীয় পথসভায় বলেন, '৭ তারিখ বেয়ানে ঘুমতন উডি হানিভাত ভাত খাই এক খিলি পান খাবেন। তার পর ভোটকেন্দ্রের দিতে যাইবরন তবে কিল্লাই যাইবেন তা বলবেন না। প্রধানমন্ত্রী আমাকে ১৬ বছর মন্ত্রী বানিয়েছেন আপনারা নৌকায় ভোট দিয়ে সেই সম্মান রাখবেন।' কাদের বলেন, 'নির্বাচন কমিশন যত নিরপেক্ষ বাংলাদেশের নির্বাচন তত নিরপেক্ষ।' মন্ত্রী বলেন, আপনারা আমাকে কেমন ভালোবাসেন, ভালোবাসার রং কী তা ৭ তারিখের ভোটের মাধ্যমে দেখা যাবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যারা নির্বাচন নিয়ে অপ্রচার করছে তাদের জবাব দিতে হবে।
ভোট চাওয়ার অভিযোগে গাজীপুরে বিএনপির দুই নেতা বহিষ্কার
আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়ায় দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে গাজীপুরে বিএনপি'র দুই নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। তারা হলেন, শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন এবং কালিয়াকৈর পৌর বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক হারিজ উজ্জামান। আজ রোববার সকালে গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ্ রিয়াজুল হান্নান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দেশ একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশের সাধারণ মানুষ আজ আওয়ামী লীগের নির্বাচন বর্জন করেছে। অথচ বিএনপি নেতা আকরাম হোসেন ও হারিজ উজ্জামান তাদের নিজ নিজ এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগ ও ভোট চেয়ে পথসভায় বক্তব্য প্রদান করেছেন। সে কারণে কেন্দ্রীয় বিএনপি তাদের দল থেকে বহিষ্কার করেছে।' তিনি জানান, গতকাল শনিবার রাতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর সই করা চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়ায় দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে গাজীপুরে বিএনপি'র দুই নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।
বাড়ি ফিরেছেন ‘নিখোঁজ’ বিএনপি নেতা আনোয়ার, পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন দেলোয়ার
খোঁজ মিলেছে বগুড়ার কাহালু উপজেলা থেকে নিখোঁজ দুই বিএনপি নেতার। তাদের পরিবার সূত্রে আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানা গেছে। তারা হলেন-উপজেলা বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ওরফে হৃদয় (৪০) ও  ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন (৫০)। পরিবারের দাবি, গত ১৪ ডিসেম্বর ডিবি পুলিশের হাতে আটকের পর থেকে তারা নিখোঁজ ছিলেন। আরওবগুড়ার বিএনপি নেতা আনোয়ার ও দেলোয়ারের খোঁজ জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট তাদের খোঁজ জানতে চেয়ে গতকাল একটি রুল জারি করেন হাইকোর্ট।  এর মধ্যে আনোয়ার হোসেন ওরফে হৃদয় আজ ভোর ৫টার দিকে বাড়ি ফেরেন বলে তার ভাতিজা নুর নবী দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন। পরিবার বলছে, ফিরে এলেও তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কিছু বলছেন না আনোয়ার। এদিকে, আরেক বিএনপি নেতা দেলোয়ার গতকাল রাতে তার স্ত্রীর সঙ্গে নিজ ফোন নম্বর থেকে যোগাযোগ করেছেন। দেলোয়ারের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন আজ বিকেলে ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, 'গতকাল রাত ৯টার দিকে আমার বাবা তার মোবাইল নম্বর থেকে আমার মাকে ফোন করেন। বাবা নিরাপদে আছেন এবং আরও কয়েকদিন নিজেকে আড়ালে রাখতে চান বলে জানিয়েছেন।' আরওনিখোঁজ বিএনপি নেতার সন্ধানে ১২ বছর ধরে অপেক্ষায় পরিবার সাখাওয়াত আরও বলেন, 'বাবা তার নিখোঁজ থাকার বিষয়ে কিছু বলেননি। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন যে তাকে ডিবি পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছিল।' যোগাযোগ করা হলে কাহালু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আনোয়ারের পরিবার নিশ্চিত করেছে যে তিনি বাড়ি ফিরেছেন।' 'কিন্তু দেলোয়ার এখনো নিখোঁজ। তিনি এখন কোথায় অবস্থান করছেন, সে বিষয়ে তার পরিবারের সদস্যরা কিছু জানাতে পারেনি,' বলেন ওসি। নিখোঁজের ঘটনায় গত মঙ্গলবার আনোয়ারের ভাগ্নে নুরুন্নবী ও দেলোয়ারের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন আইনজীবীর মাধ্যমে হাইকোর্টে পৃথক দুটি রিট করেন। তারা জানান, গত ১৪ ডিসেম্বর বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন ও দেলোয়ার হোসেনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক করলেও, তাদের কোনো আদালতে হাজির করা হয়নি। তারা এ ব্যাপারে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তাদের খোঁজ জানতে চেয়ে গতকাল একটি রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর মধ্যে আনোয়ার হোসেন ওরফে হৃদয় আজ ভোর ৫টার দিকে বাড়ি ফেরেন বলে তার ভাতিজা নুর নবী দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন। পরিবার বলছে, ফিরে এলেও তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কিছু বলছেন না আনোয়ার। এদিকে, আরেক বিএনপি নেতা দেলোয়ার গতকাল রাতে তার স্ত্রীর সঙ্গে নিজ ফোন নম্বর থেকে যোগাযোগ করেছেন। দেলোয়ারের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন আজ বিকেলে ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, 'গতকাল রাত ৯টার দিকে আমার বাবা তার মোবাইল নম্বর থেকে আমার মাকে ফোন করেন। বাবা নিরাপদে আছেন এবং আরও কয়েকদিন নিজেকে আড়ালে রাখতে চান বলে জানিয়েছেন।' সাখাওয়াত আরও বলেন, 'বাবা তার নিখোঁজ থাকার বিষয়ে কিছু বলেননি। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন যে তাকে ডিবি পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছিল।' যোগাযোগ করা হলে কাহালু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আনোয়ারের পরিবার নিশ্চিত করেছে যে তিনি বাড়ি ফিরেছেন।' 'কিন্তু দেলোয়ার এখনো নিখোঁজ। তিনি এখন কোথায় অবস্থান করছেন, সে বিষয়ে তার পরিবারের সদস্যরা কিছু জানাতে পারেনি,' বলেন ওসি। নিখোঁজের ঘটনায় গত মঙ্গলবার আনোয়ারের ভাগ্নে নুরুন্নবী ও দেলোয়ারের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন আইনজীবীর মাধ্যমে হাইকোর্টে পৃথক দুটি রিট করেন। তারা জানান, গত ১৪ ডিসেম্বর বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন ও দেলোয়ার হোসেনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক করলেও, তাদের কোনো আদালতে হাজির করা হয়নি। তারা এ ব্যাপারে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
খোঁজ মিলেছে বগুড়ার কাহালু উপজেলা থেকে নিখোঁজ দুই বিএনপি নেতার। তাদের পরিবার সূত্রে আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানা গেছে।
বিএনপির দুই কর্মীকে লিফলেট বিতরণকালে পিটিয়ে পুলিশে দিল ছাত্রলীগ
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি এলাকায় নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে লিফলেট বিতরণকালে বিএনপির দুই কর্মীকে পিটিয়েছে ছাত্রলীগ কর্মীরা। পরে ওই দুজনকে তারা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। সিআরবি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই বোরহান দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে কাজীর দেউড়ির অ্যাপোলো শপিং কমপ্লেক্সের সামনে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার মনিরুল ইসলামের (৩০) বাড়ি নোয়াখালীর সেনবাগে এবং বিজয় চৌধুরীর (২০) বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ছাত্রলীগের লোকজন ওই দুজনকে কিল, ঘুষি ও লাথি মারে এবং তাদের টেনেহিঁচড়ে টহল পুলিশের কাছে নিয়ে যায়। স্থানীয়রা জানায়, বিকেলে অ্যাপোলো শপিং কমপ্লেক্সের সামনে বিএনপির একদল লোক নির্বাচন বয়কটের আহ্বান জানিয়ে লিফলেট বিলি করছিলেন। এ সময় হঠাৎ সেখানে ছাত্রলীগের কর্মীরা গিয়ে দুজনকে আটক করে। ঘটনাস্থলে থাকা ছাত্রলীগকর্মী আনোয়ার হোসেন নিজেকে হাজী মোহাম্মদ মহসীন সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক পরিচয় দেন। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিএনপির লোকজন নির্বাচন বিরোধী লিফলেট বিতরণ করছিল। এটা দেখে ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের ধাওয়া করে। দুজনকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে লিফলেট উদ্ধার করা হয়েছে।' জানতে চাইলে এসআই বোরহান বলেন, 'ছাত্রলীগের লোকজন দুই বিএনপি সদস্যকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। তাদের পরিচয় যাচাইয়ের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।'
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি এলাকায় নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে লিফলেট বিতরণকালে বিএনপির দুই কর্মীকে পিটিয়েছে ছাত্রলীগ কর্মীরা।
শুক্র ও শনিবার গণসংযোগ-লিফলেট বিতরণ করবে বিএনপি
এক দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামীকাল শুক্রবার ও আগামী শনিবার দুই দিনের গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, 'নির্বাচন বর্জন এবং আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে চলমান অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে আগামী ২৯ ও ৩০ ডিসেম্বর গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করা হবে।' আজ বিএনপির পূর্বঘোষিত তিন দিনের কর্মসূচির শেষ দিন বলেও জানান দলের জ্যেষ্ঠ এই নেতা।
এক দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামীকাল শুক্রবার ও আগামী শনিবার দুই দিনের গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
টিআইবির কোটিপতির হিসাবে গরমিল, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) দেওয়া কোটিপতির হিসাবে গরমিল আছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং এই হিসাব দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার কোনো সুযোগ নেই।' আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে টিআইবির মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া তথ্য 'আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে কোটিপতি প্রার্থী বেশি' নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'গ্রামেও এক কাঠা জমির দাম ২০ লাখ টাকা, ৫ কাঠা জমির দাম ১ কোটি টাকা। আর ঢাকা শহরে ১ কোটি টাকার নিচে কোথাও জমি নেই। চট্টগ্রাম শহরেও নেই। সুতরাং এই হিসাব দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার কোনো সুযোগ নেই। তাদের এই হিসাব ধরে যদি কোটিপতি গোনা হয় তাহলে সেই হিসাবে গরমিল আছে এবং সেটা উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত।' তিনি আরও বলেন, 'পদ্মা সেতুর দুর্নীতি নিয়ে টিআইবির খুব বড় গলা ছিল, প্রচুর প্রেস কনফারেন্স করেছে, বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়েছে। পরে দেখা গেলো যে, পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি তো হয়ইনি, দুর্নীতি হওয়ার কোনো সুযোগও সৃষ্টি হয়নি। কারণ টাকা ছাড়া দুর্নীতি হয় কীভাবে! তারা নানা সময়ে নানা গবেষণা করে, পরে দেখা যায় সেগুলো আসলে গবেষণা নয়, কতগুলো রিপোর্ট। নিজেদের ইচ্ছামতো বা সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়।' বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর 'জনগণ ও বিদেশিরা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে' মন্তব্যের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, 'সারাদেশে এখন নির্বাচনী উৎসাহ-উদ্দীপনা। আর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এখন নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে। নির্বাচন যদি প্রত্যাখ্যান করত ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আমেরিকা অবজারভার পাঠাতো না। ওআইসি, সার্কভুক্ত দেশগুলোসহ বিভিন্ন দেশ অবজারভার পাঠাত না। তাদের ভোটে আগ্রহ আছে এবং এই নির্বাচনকে গ্রহণ করেছে বিধায় তারা অবজারভার  পাঠাচ্ছে। রুহুল কবির রিজভীসহ গুটিকয়েক নেতা হয়তো নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাদের কর্মী-সমর্থকরাও সবাই প্রত্যাখ্যান করেননি, তাদের সমর্থকরা ভোট দিতে যাবেন।' রিজভীর আরেকটি মন্তব্য 'আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে দেশ ভারতের অঙ্গরাজ্য হয়ে যাবে' এর জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, 'আওয়ামী লীগ ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে। ভারতের কাছ থেকে আমরা অনেক কিছু আদায় করেছি। ১৯৭৪ সালে ভারতের সঙ্গে আমাদের ছিটমহল বিনিময়ের চুক্তি হয়েছিল, সেটি কার্যকর ছিল না, শেখ হাসিনা কার্যকর করেছেন। আমরা আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে মামলা করে ভারতের কাছ থেকে বিপুল সমুদ্রসীমা আদায় করেছি। সমুদ্রে বাংলাদেশের প্রায় সমপরিমাণ একটি অঞ্চল আমাদের অধিকারে এসেছে।' 'ভারতের সঙ্গে সীমান্তচুক্তি বাস্তবায়ন হয়েছে। সমগ্র ভারতে এখন বাংলাদেশ টেলিভিশন দেখা যায়। এভাবে বহুকিছু অর্জন হয়েছে। অঙ্গরাজ্য হলে তো বহু আগে হয়ে যেত', যোগ করেন তিনি।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) দেওয়া কোটিপতির হিসাবে গরমিল আছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং এই হিসাব দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার কোনো সুযোগ নেই।'
১ জানুয়ারি থেকে আদালত বর্জনের ঘোষণা বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের
বিএনপি ঘোষিত অসহযোগ আন্দোলনের অংশ হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আগামী বছরের ১ থেকে ৭ জানুয়ারি দেশের সব আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। আজ বুধবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনের দক্ষিণ হলরুমে আয়োজিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিতি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন, ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি জয়নুল আবেদীন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী, বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও আয়োজক সংগঠনের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ অনেকে। এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, 'এত বছর পরে আমরা "হীরক রাজার দেশে" চলচ্চিত্রের প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি।'
বিএনপি ঘোষিত অসহযোগ আন্দোলনের অংশ হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আগামী বছরের ১ থেকে ৭ জানুয়ারি দেশের সব আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
কোটি কোটি মানুষ ৭ জানুয়ারি ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট দেওয়ার জন্য দেশের কোটি কোটি মানুষ মুখিয়ে আছেন। আজ বুধবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগের স্লোগান 'স্মার্ট বাংলাদেশ' আর 'উন্নয়ন দৃশ্যমান বাড়বে এবার কর্মসংস্থান'। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই)-এর এক গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আইআরআই তাদের গবেষণা রিপোর্টে বলেছে বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ মানুষ শেখ হাসিনাকে সমর্থন করে। আমরা ভয় পাবো কাকে। আমাদের জনগণ ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অস্তিত্বকে আরও সমৃদ্ধ, আরও উজ্জ্বল, আরও আলোকিত করার জন্য লড়ে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনা আমাদের ডায়নামিক লিডার। ইনশাল্লাহ নির্বাচনে জয় আমাদের হবে। অসত্যের কাছে আমরা মাথা নত করবো না। সকালে ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠান শুরু হয় জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে। পরে তথ্যচিত্রে আওয়ামী লীগ শাসনমালের উন্নয়নের বিবরণ তুলে ধরা হয়। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এরপর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইশতেহার ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা এক প্রতিকূল পরিবেশের মুখে লড়াই করে যাচ্ছি। নির্বাচন আমাদের করতে হবে, সংবিধানের বাধ্যবাধকতার কারণে। আওয়ামী লীগ ছাড়া কেউ শান্তিপূর্ণ ভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি। নির্বাচিত সরকার ক্ষমতা হস্তান্তর করবে নির্বাচিত সরকারের হাতে, সেটা আমরা বিশ্বাস করি। নির্বাচনের ভয় পাওয়ার কিছু নেই জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ আগুন সন্ত্রাস জ্বালাও-পোড়াও বারে বারে আমরা দেখেছি। এসব ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাস মোকাবিলা করেই আমাদের লাল-সবুজের পতাকা হাতে হৃদয়ের বন্দরে পৌঁছাবো ইনশাল্লাহ। সেই লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আমাদের কাছে একজন 'ইন্সপায়ারিং লিডার'। বাংলাদেশে গত ৪৮ বছরে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতার নাম শেখ হাসিনা, গত ৪৮ বছরে সাহসী নেতার নাম শেখ হাসিনা, গত ৪৮ বছরে দক্ষ প্রশাসকের নাম শেখ হাসিনা, গত ৪৮ বছরে সবচেয়ে সফল ডিপ্লোমেটিকের নাম শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট দেওয়ার জন্য দেশের কোটি কোটি মানুষ মুখিয়ে আছেন।
নৌকা প্রতীকে জাসদের ইনু স্থানীয় আ. লীগের সমর্থন কতটা পাচ্ছেন
সমঝোতার ভিত্তিতে নৌকা প্রতীক নিয়ে কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের শরিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু। একই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামারুল আরেফিন। এই আসনের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বেশিরভাগের সমর্থন ইনু নয়, কামারুল আরেফিনই পাচ্ছেন বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। গত সোমবার সংসদীয় এলাকাটির বেশ কয়েকটি জায়গা ঘুরে ভোটার ও অন্যান্য দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এমনটিই জানা গেছে। স্থানীয় নেতাকর্মীদের ভাষ্য, ১৪ দলীয় জোটের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শক্তভাবে হাল না ধরলে এই আসনের বিজয় নৌকা হারাতে পারে। সেক্ষেত্রে ট্রাক প্রতীক পাওয়া আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুলের জয়ের সম্ভাবনাই বেশি। জয়ী যিনিই হোন না কেন, এই আসনে নির্বাচন যে ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে, সে বিষয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীরা একমত। কুষ্টিয়া-২ আসনে মোট আট প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে চারজন স্বতন্ত্র ও চারজন দলীয় প্রার্থী। তবে নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা তিনবারের সংসদ সদস্য হাসানুল হক ইনু ও আওয়ামী লীগ নেতা কামারুল আরেফিনের মধ্যেই হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। গতকাল মঙ্গলবার ভেড়ামারার বাহাদুরপুর, চাঁদগ্রাম ও মোকারিমপুর এবং মিরপুরের ছাতিয়ান, বহলবাড়ীয়া ও সদরপুর ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়—নৌকা, ট্রাক, লাঙ্গল, কেটলি ও মোড়াসহ প্রায় সব প্রতীকের পোস্টারই মোড়ে মোড়ে সাঁটানো আছে। তবে নির্দিষ্ট দুয়েকটি জায়গা ছাড়া সাধারণ মানুষের মধ্যে ভোট ঘিরে উৎসাহ দেখা যায়নি। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় দুই লাখ ৭১ হাজার ভোটার নিয়ে থাকা মিরপুরের মানুষ তাদের এলাকার সন্তান কামারুলকেই সংসদে দেখতে চান। আর এক লাখ ৮০ হাজার ভোটারের ভেড়ামারাবাসী এবারও এলাকার প্রার্থী হাসানুল হক ইনুকে জেতাতে জান। গত ২৩ ডিসেম্বর ভার্চুয়ালি কুষ্টিয়ায় নির্বাচনী সভায় যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'ইনু ভাইও নৌকায় চড়ছেন। কাজেই নৌকা যেন দোল খেয়ে পড়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন।' 'ভেড়ামারার লোকজন বারবার এমপি পেয়েছে। এবার আমরা চাই, আমাদের ঘরের ছেলে সংসদে যাক।' শুরুতে কামারুলের পক্ষে সমর্থন বেশি থাকলেও এখন অনেকেই ইনুর পক্ষে আসছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের কয়েকজন স্থানীয় নেতাকর্মী। তবে মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হালিম, সাধারণ সম্পাদক সামিউল ইসলাম সানা ও উপজেলা চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান মিঠুর মতো স্থানীয় শীর্ষ অনেক নেতা কামারুলের সঙ্গে থেকেই ভোটসভায় বক্তব্য রাখছেন। এ বিষয়ে হাসানুল হক ইনু ডেইলি স্টারকে বলেন, '১৪ দলীয় জোটের সবচেয়ে বড় দল আওয়ামী লীগ দলগতভাবে আমার সঙ্গে ভোট করছে। সেই দলের দুয়েকজন নেতা বা কর্মী বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্তভাবে ভোট করছেন। এটা দলীয় বিশৃঙ্খলা। এই বিশৃঙ্খলা জোটনেত্রী দলীয়ভাবে সমাধান করবেন।' কামারুল আরেফিনের ভাষ্য, শুধু শীর্ষ নয়, আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতারাও তার সঙ্গেই আছেন। তাকেই ভোট দেবেন। তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী গণভবনে যেদিন আমাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার কথা বলেন, সেদিনই মিরপুর ও ভেড়ামারা—দুই থানা আওয়ামী লীগের শতকরা ৯৫ ভাগ নেতাকর্মী একত্রিত হয়েছে। একত্রিতভাবেই কাজ করছে। বলতে পারি, তৃণমূলের শতভাগ নেতাকর্মী আমার সঙ্গে আছেন। ইউনিয়ন-ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরাও আমার সঙ্গে আছেন। হয়তো বা থানা ও পৌরসভার দুয়েকজন এর বাইরে থাকতে পারেন।' নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার শুরুর দিকে স্থানীয় নেতাদের ইনুর পক্ষে না দেখা গেলেও এখন তাদের কেউ কেউ নৌকার পক্ষে মাঠে নেমেছেন। তাদের মধ্যে আছেন মিরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র এনামুল হক, মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রবিউল হক রবি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল মালিথা, কুষ্টিয়া জেলা যুবলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম, মিরপুর পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক হাসানুল খান তাপস, ভেড়ামারা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিউল ইসলাম কুব্বাত, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম, ভেড়ামারা পৌর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোকাদ্দেস হোসেন, ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রওশন জামিল রাসেলসহ আরও অনেকে। ইনু বলেন, 'আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাসদের বিরোধ নেই। সংঘর্ষ বা খুনোখুনি হয়েছে সামাজিক ও গোষ্ঠীগত বিরোধে। নৌকার প্রার্থী হিসেবে যেখানেই যাচ্ছি, আওয়ামী লীগ ও জাসদের নেতারা সঙ্গে থাকছেন।' এই আসনে বিগত নির্বাচনের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, শুধু আওয়ামী লীগ কিংবা জাসদের ভোটই জয়-পরাজয় নিশ্চিতে শতভাগ নীতিনির্ধারক নয়। আসনটিতে নির্বাচন বর্জন করা বিএনপিরও ভোটব্যাংকও বিশাল। ভোটার আছে জাতীয় পার্টিরও। সব হিসাবনিকাশ মিলে আসনটিতে জটিল সমীকরণের জন্ম দিচ্ছে। 'গত নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের নেতারা শেষ মুহূর্তে মাঠে নেমেছিলেন। এবারও শেষ পর্যন্ত সবাই নৌকাতেই আসবেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক কখনো নৌকার বিরুদ্ধে যেতে পারেন না। সেক্ষেত্রে এবারও আমরাই জয়ী হবো বলে আশাবাদী।' ১৯৭৩ সালের নির্বাচনের পর থেকে কখনোই এই আসনে জয় পায়নি আওয়ামী লীগ। ১৯৯১ সালে বিএনপির আবদুর রউফ চৌধুরী এবং ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বিএনপি প্রার্থী শহিদুল ইসলাম এই আসনে জয়ী হন। ১৯৯৬ সালে যে নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে, সেই নির্বাচনেও নৌকার প্রার্থী মাহবুব উল আলম হানিফকে দ্বিগুণেরও বেশি ভোটে পরাজিত করেন শহিদুল ইসলাম। সেবার জয়ী প্রার্থীর ৬৪ হাজার ৩৮৯ ভোটের বিপরীতে ২৮ হাজার ৫৪৪ ভোট পেয়ে হানিফ চতুর্থ ও ২৬ হাজার ৩২৭ ভোটে পেয়ে হাসানুল হক ইনু পঞ্চম স্থান অধিকার করেন। আর ৪০ হাজার ১০৬ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হন জাতীয় পার্টির আহসান হাবিব লিঙ্কন। তৃতীয় স্থানে ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আব্দুল ওয়াহেদ। ২০০১ সালের ভোটে বিএনপির সঙ্গে ব্যবধান অনেকটাই কমে আসে আওয়ামী লীগের। শহীদুল ইসলামের এক লাখ ৫৪৪ ভোটের বিপরীতে প্রায় ৮৮ হাজার ভোট পান মাহবুব উল আলম হানিফ। প্রায় ২০ ভাগ ভোট বৃদ্ধি পায় আওয়ামী লীগের। প্রায় ৩৯ হাজার ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে উঠে আসেন হাসানুল হক ইনু। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী হয়ে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জাসদ সভাপতি ইনু। সেই নির্বাচনে তার প্রাপ্ত ভোট এক লাখ ৬৫ হাজার ৯৫২, যা জাসদ ও আওয়ামী লীগের সম্মিলিত ভোটও বলা যায়। পরাজিত শহীদুল ইসলাম ২০০৮ সালেও টেনে নেন এক লাখ সাত হাজার ভোট। ২০১৪ সালে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হন হাসানুল হক ইনু। ভোটের হিসাব বলছে, বর্তমান নির্বাচনে এই আসনে জয়-পরাজয় নির্ধারণে অনেকটাই মুখ্য ভূমিকা রাখবে বিএনপি-জামায়াতের ভোটাররাও। সেক্ষেত্রে কার পক্ষে যাবে সেই ভোট, ট্রাক না নৌকা, তাই এখন প্রশ্ন। বিষয়টি নিয়ে প্রার্থীরা সরাসরি কথা না বললেও সাধারণ মানুষ বলছেন—বিএনপির ভোটাররা কখনোই নৌকায় ভোট দেবেন না। সেক্ষেত্রে ট্রাকের বড় ভোট ব্যাংক হতে পারে বিএনপি-জামায়াতের সাধারণ ভোটাররা, যদি তারা শেষপর্যন্ত ভোটের মাঠে উপস্থিত হন। মিরপুর উপজেলার স্বরূপদহের খাঁ পাড়ার ভোটার রুহুল আলী মণ্ডল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বর্তমান সরকারের ১৫ বছরে এলাকায় অনেক উন্নয়ন হয়েছে। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বেড়েছে। এজন্য নৌকা ও জাসদের ভোট অনেকটাই বেড়েছে। তারপরও এখানে বিএনপির প্রচুর সংখ্যক ভোটার আছেন, তারা কখনোই নৌকায় ভোট দেবেন না।' বিএনপির নেতাকর্মীরা নৌকার বিরুদ্ধে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে কামারুল আরেফিন বলেন, 'আমি সাড়ে নয় বছর উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলাম। কখনো মানুষের ক্ষতি করিনি। এলাকার ছেলে হিসেবে তারা আমাকে ভোট দিতে পারেন। তবে বিএনপির কোনো নেতার সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়নি।' 'মিরপুরের আড়াই লাখের বেশি ভোটার ঈদের নামাজের মতো আমাকে ভোট দেওয়ার জন্য এক কাতারে সামিল হয়েছেন। সেখানে সব দলের ভোটারই থাকতে পারে', যোগ করেন তিনি। অঞ্চলভিত্তিক এই মেরুকরণের বিষয়ে মত দেন সেখানকার প্রবীণ ভোটার জলিল মণ্ডলও। তিনি বলেন, 'ভেড়ামারার লোকজন বারবার এমপি পেয়েছে। এবার আমরা চাই, আমাদের ঘরের ছেলে সংসদে যাক।' 'আওয়ামী লীগের শতভাগ নেতাকর্মী নৌকার পক্ষে মাঠে না নামলে ইনুর জয়ী হওয়া কতটা কঠিন হবে,' উল্লেখ করে জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সেক্রেটারি আব্দুল আলীম স্বপন বলেন, 'গত নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের নেতারা শেষ মুহূর্তে মাঠে নেমেছিলেন। এবারও শেষ পর্যন্ত সবাই নৌকাতেই আসবেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক কখনো নৌকার বিরুদ্ধে যেতে পারেন না। সেক্ষেত্রে এবারও আমরাই জয়ী হবো বলে আশাবাদী।' এ বিষয়ে মিরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র এনামুল হক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নৌকার পক্ষেই আছি। আওয়ামী লীগের যারা ট্রাকের পক্ষে ছিলেন, তারাও এখন চুপি চুপি নৌকার দিকে চলে আসছেন। নৌকার জয় সুনিশ্চিত।' ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাহবুব উল আলম হানিফের ভাই রফিকুল আলম চুন্নুকে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুল আরেফিনের সঙ্গে দেখা গেলেও তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি ভেড়ামারা-মিরপুরে নির্বাচন প্রচারণায় অংশ নিচ্ছি না। আমি কুষ্টিয়া-৩ আসনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের নির্বাচনী প্রচারে আছি।' এ বিষয়ে জানতে মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সামিউল ইসলাম সানাকে ফোন করলে তিনি নির্বাচনী জনসভায় আছেন বলে ফোন কেটে দেন। আবার ফোন করে কার জনসভায় আছেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ট্রাক প্রতীক পাওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুলের জনসভায় আছি।' আরওআ. লীগের লুটপাট-দুর্নীতি থেকে দেশকে রক্ষার স্বার্থে জাপাকে ভোট দিন: জিএম কাদের আরও‘নৌকায় ভোট দিতে হবে, নয়তো পানি-বিদ্যুৎ-গ্যাস থাকবে না’ আরওদিন যতই যাচ্ছে নৌকার লোক ততই অগ্নিমূর্তি ধারণ করছে: তৈমুর আরও‘আমি আর ডামি’র নির্বাচন দেশকে সংকটের দিকে নিয়ে যাবে: রুহিন হোসেন প্রিন্স শুরুতে কামারুলের পক্ষে সমর্থন বেশি থাকলেও এখন অনেকেই ইনুর পক্ষে আসছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের কয়েকজন স্থানীয় নেতাকর্মী। তবে মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হালিম, সাধারণ সম্পাদক সামিউল ইসলাম সানা ও উপজেলা চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান মিঠুর মতো স্থানীয় শীর্ষ অনেক নেতা কামারুলের সঙ্গে থেকেই ভোটসভায় বক্তব্য রাখছেন। এ বিষয়ে হাসানুল হক ইনু ডেইলি স্টারকে বলেন, '১৪ দলীয় জোটের সবচেয়ে বড় দল আওয়ামী লীগ দলগতভাবে আমার সঙ্গে ভোট করছে। সেই দলের দুয়েকজন নেতা বা কর্মী বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্তভাবে ভোট করছেন। এটা দলীয় বিশৃঙ্খলা। এই বিশৃঙ্খলা জোটনেত্রী দলীয়ভাবে সমাধান করবেন।' কামারুল আরেফিনের ভাষ্য, শুধু শীর্ষ নয়, আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতারাও তার সঙ্গেই আছেন। তাকেই ভোট দেবেন। তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী গণভবনে যেদিন আমাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার কথা বলেন, সেদিনই মিরপুর ও ভেড়ামারা—দুই থানা আওয়ামী লীগের শতকরা ৯৫ ভাগ নেতাকর্মী একত্রিত হয়েছে। একত্রিতভাবেই কাজ করছে। বলতে পারি, তৃণমূলের শতভাগ নেতাকর্মী আমার সঙ্গে আছেন। ইউনিয়ন-ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরাও আমার সঙ্গে আছেন। হয়তো বা থানা ও পৌরসভার দুয়েকজন এর বাইরে থাকতে পারেন।' নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার শুরুর দিকে স্থানীয় নেতাদের ইনুর পক্ষে না দেখা গেলেও এখন তাদের কেউ কেউ নৌকার পক্ষে মাঠে নেমেছেন। তাদের মধ্যে আছেন মিরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র এনামুল হক, মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রবিউল হক রবি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল মালিথা, কুষ্টিয়া জেলা যুবলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম, মিরপুর পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক হাসানুল খান তাপস, ভেড়ামারা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিউল ইসলাম কুব্বাত, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম, ভেড়ামারা পৌর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোকাদ্দেস হোসেন, ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রওশন জামিল রাসেলসহ আরও অনেকে। ইনু বলেন, 'আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাসদের বিরোধ নেই। সংঘর্ষ বা খুনোখুনি হয়েছে সামাজিক ও গোষ্ঠীগত বিরোধে। নৌকার প্রার্থী হিসেবে যেখানেই যাচ্ছি, আওয়ামী লীগ ও জাসদের নেতারা সঙ্গে থাকছেন।' এই আসনে বিগত নির্বাচনের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, শুধু আওয়ামী লীগ কিংবা জাসদের ভোটই জয়-পরাজয় নিশ্চিতে শতভাগ নীতিনির্ধারক নয়। আসনটিতে নির্বাচন বর্জন করা বিএনপিরও ভোটব্যাংকও বিশাল। ভোটার আছে জাতীয় পার্টিরও। সব হিসাবনিকাশ মিলে আসনটিতে জটিল সমীকরণের জন্ম দিচ্ছে। 'গত নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের নেতারা শেষ মুহূর্তে মাঠে নেমেছিলেন। এবারও শেষ পর্যন্ত সবাই নৌকাতেই আসবেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক কখনো নৌকার বিরুদ্ধে যেতে পারেন না। সেক্ষেত্রে এবারও আমরাই জয়ী হবো বলে আশাবাদী।' ১৯৭৩ সালের নির্বাচনের পর থেকে কখনোই এই আসনে জয় পায়নি আওয়ামী লীগ। ১৯৯১ সালে বিএনপির আবদুর রউফ চৌধুরী এবং ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বিএনপি প্রার্থী শহিদুল ইসলাম এই আসনে জয়ী হন। ১৯৯৬ সালে যে নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে, সেই নির্বাচনেও নৌকার প্রার্থী মাহবুব উল আলম হানিফকে দ্বিগুণেরও বেশি ভোটে পরাজিত করেন শহিদুল ইসলাম। সেবার জয়ী প্রার্থীর ৬৪ হাজার ৩৮৯ ভোটের বিপরীতে ২৮ হাজার ৫৪৪ ভোট পেয়ে হানিফ চতুর্থ ও ২৬ হাজার ৩২৭ ভোটে পেয়ে হাসানুল হক ইনু পঞ্চম স্থান অধিকার করেন। আর ৪০ হাজার ১০৬ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হন জাতীয় পার্টির আহসান হাবিব লিঙ্কন। তৃতীয় স্থানে ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আব্দুল ওয়াহেদ। ২০০১ সালের ভোটে বিএনপির সঙ্গে ব্যবধান অনেকটাই কমে আসে আওয়ামী লীগের। শহীদুল ইসলামের এক লাখ ৫৪৪ ভোটের বিপরীতে প্রায় ৮৮ হাজার ভোট পান মাহবুব উল আলম হানিফ। প্রায় ২০ ভাগ ভোট বৃদ্ধি পায় আওয়ামী লীগের। প্রায় ৩৯ হাজার ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে উঠে আসেন হাসানুল হক ইনু। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী হয়ে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জাসদ সভাপতি ইনু। সেই নির্বাচনে তার প্রাপ্ত ভোট এক লাখ ৬৫ হাজার ৯৫২, যা জাসদ ও আওয়ামী লীগের সম্মিলিত ভোটও বলা যায়। পরাজিত শহীদুল ইসলাম ২০০৮ সালেও টেনে নেন এক লাখ সাত হাজার ভোট। ২০১৪ সালে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হন হাসানুল হক ইনু। ভোটের হিসাব বলছে, বর্তমান নির্বাচনে এই আসনে জয়-পরাজয় নির্ধারণে অনেকটাই মুখ্য ভূমিকা রাখবে বিএনপি-জামায়াতের ভোটাররাও। সেক্ষেত্রে কার পক্ষে যাবে সেই ভোট, ট্রাক না নৌকা, তাই এখন প্রশ্ন। বিষয়টি নিয়ে প্রার্থীরা সরাসরি কথা না বললেও সাধারণ মানুষ বলছেন—বিএনপির ভোটাররা কখনোই নৌকায় ভোট দেবেন না। সেক্ষেত্রে ট্রাকের বড় ভোট ব্যাংক হতে পারে বিএনপি-জামায়াতের সাধারণ ভোটাররা, যদি তারা শেষপর্যন্ত ভোটের মাঠে উপস্থিত হন। মিরপুর উপজেলার স্বরূপদহের খাঁ পাড়ার ভোটার রুহুল আলী মণ্ডল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বর্তমান সরকারের ১৫ বছরে এলাকায় অনেক উন্নয়ন হয়েছে। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বেড়েছে। এজন্য নৌকা ও জাসদের ভোট অনেকটাই বেড়েছে। তারপরও এখানে বিএনপির প্রচুর সংখ্যক ভোটার আছেন, তারা কখনোই নৌকায় ভোট দেবেন না।' বিএনপির নেতাকর্মীরা নৌকার বিরুদ্ধে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে কামারুল আরেফিন বলেন, 'আমি সাড়ে নয় বছর উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলাম। কখনো মানুষের ক্ষতি করিনি। এলাকার ছেলে হিসেবে তারা আমাকে ভোট দিতে পারেন। তবে বিএনপির কোনো নেতার সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়নি।' 'মিরপুরের আড়াই লাখের বেশি ভোটার ঈদের নামাজের মতো আমাকে ভোট দেওয়ার জন্য এক কাতারে সামিল হয়েছেন। সেখানে সব দলের ভোটারই থাকতে পারে', যোগ করেন তিনি। অঞ্চলভিত্তিক এই মেরুকরণের বিষয়ে মত দেন সেখানকার প্রবীণ ভোটার জলিল মণ্ডলও। তিনি বলেন, 'ভেড়ামারার লোকজন বারবার এমপি পেয়েছে। এবার আমরা চাই, আমাদের ঘরের ছেলে সংসদে যাক।' 'আওয়ামী লীগের শতভাগ নেতাকর্মী নৌকার পক্ষে মাঠে না নামলে ইনুর জয়ী হওয়া কতটা কঠিন হবে,' উল্লেখ করে জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সেক্রেটারি আব্দুল আলীম স্বপন বলেন, 'গত নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের নেতারা শেষ মুহূর্তে মাঠে নেমেছিলেন। এবারও শেষ পর্যন্ত সবাই নৌকাতেই আসবেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক কখনো নৌকার বিরুদ্ধে যেতে পারেন না। সেক্ষেত্রে এবারও আমরাই জয়ী হবো বলে আশাবাদী।' এ বিষয়ে মিরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র এনামুল হক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নৌকার পক্ষেই আছি। আওয়ামী লীগের যারা ট্রাকের পক্ষে ছিলেন, তারাও এখন চুপি চুপি নৌকার দিকে চলে আসছেন। নৌকার জয় সুনিশ্চিত।' ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাহবুব উল আলম হানিফের ভাই রফিকুল আলম চুন্নুকে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুল আরেফিনের সঙ্গে দেখা গেলেও তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি ভেড়ামারা-মিরপুরে নির্বাচন প্রচারণায় অংশ নিচ্ছি না। আমি কুষ্টিয়া-৩ আসনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের নির্বাচনী প্রচারে আছি।' এ বিষয়ে জানতে মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সামিউল ইসলাম সানাকে ফোন করলে তিনি নির্বাচনী জনসভায় আছেন বলে ফোন কেটে দেন। আবার ফোন করে কার জনসভায় আছেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ট্রাক প্রতীক পাওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুলের জনসভায় আছি।' আরওআ. লীগের লুটপাট-দুর্নীতি থেকে দেশকে রক্ষার স্বার্থে জাপাকে ভোট দিন: জিএম কাদের আরও‘নৌকায় ভোট দিতে হবে, নয়তো পানি-বিদ্যুৎ-গ্যাস থাকবে না’ আরওদিন যতই যাচ্ছে নৌকার লোক ততই অগ্নিমূর্তি ধারণ করছে: তৈমুর আরও‘আমি আর ডামি’র নির্বাচন দেশকে সংকটের দিকে নিয়ে যাবে: রুহিন হোসেন প্রিন্স ১৯৭৩ সালের নির্বাচনের পর থেকে কখনোই এই আসনে জয় পায়নি আওয়ামী লীগ। ১৯৯১ সালে বিএনপির আবদুর রউফ চৌধুরী এবং ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বিএনপি প্রার্থী শহিদুল ইসলাম এই আসনে জয়ী হন। ১৯৯৬ সালে যে নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে, সেই নির্বাচনেও নৌকার প্রার্থী মাহবুব উল আলম হানিফকে দ্বিগুণেরও বেশি ভোটে পরাজিত করেন শহিদুল ইসলাম। সেবার জয়ী প্রার্থীর ৬৪ হাজার ৩৮৯ ভোটের বিপরীতে ২৮ হাজার ৫৪৪ ভোট পেয়ে হানিফ চতুর্থ ও ২৬ হাজার ৩২৭ ভোটে পেয়ে হাসানুল হক ইনু পঞ্চম স্থান অধিকার করেন। আর ৪০ হাজার ১০৬ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হন জাতীয় পার্টির আহসান হাবিব লিঙ্কন। তৃতীয় স্থানে ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আব্দুল ওয়াহেদ। ২০০১ সালের ভোটে বিএনপির সঙ্গে ব্যবধান অনেকটাই কমে আসে আওয়ামী লীগের। শহীদুল ইসলামের এক লাখ ৫৪৪ ভোটের বিপরীতে প্রায় ৮৮ হাজার ভোট পান মাহবুব উল আলম হানিফ। প্রায় ২০ ভাগ ভোট বৃদ্ধি পায় আওয়ামী লীগের। প্রায় ৩৯ হাজার ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে উঠে আসেন হাসানুল হক ইনু। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী হয়ে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জাসদ সভাপতি ইনু। সেই নির্বাচনে তার প্রাপ্ত ভোট এক লাখ ৬৫ হাজার ৯৫২, যা জাসদ ও আওয়ামী লীগের সম্মিলিত ভোটও বলা যায়। পরাজিত শহীদুল ইসলাম ২০০৮ সালেও টেনে নেন এক লাখ সাত হাজার ভোট। ২০১৪ সালে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হন হাসানুল হক ইনু। ভোটের হিসাব বলছে, বর্তমান নির্বাচনে এই আসনে জয়-পরাজয় নির্ধারণে অনেকটাই মুখ্য ভূমিকা রাখবে বিএনপি-জামায়াতের ভোটাররাও। সেক্ষেত্রে কার পক্ষে যাবে সেই ভোট, ট্রাক না নৌকা, তাই এখন প্রশ্ন। বিষয়টি নিয়ে প্রার্থীরা সরাসরি কথা না বললেও সাধারণ মানুষ বলছেন—বিএনপির ভোটাররা কখনোই নৌকায় ভোট দেবেন না। সেক্ষেত্রে ট্রাকের বড় ভোট ব্যাংক হতে পারে বিএনপি-জামায়াতের সাধারণ ভোটাররা, যদি তারা শেষপর্যন্ত ভোটের মাঠে উপস্থিত হন। মিরপুর উপজেলার স্বরূপদহের খাঁ পাড়ার ভোটার রুহুল আলী মণ্ডল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বর্তমান সরকারের ১৫ বছরে এলাকায় অনেক উন্নয়ন হয়েছে। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বেড়েছে। এজন্য নৌকা ও জাসদের ভোট অনেকটাই বেড়েছে। তারপরও এখানে বিএনপির প্রচুর সংখ্যক ভোটার আছেন, তারা কখনোই নৌকায় ভোট দেবেন না।' বিএনপির নেতাকর্মীরা নৌকার বিরুদ্ধে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে কামারুল আরেফিন বলেন, 'আমি সাড়ে নয় বছর উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলাম। কখনো মানুষের ক্ষতি করিনি। এলাকার ছেলে হিসেবে তারা আমাকে ভোট দিতে পারেন। তবে বিএনপির কোনো নেতার সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়নি।' 'মিরপুরের আড়াই লাখের বেশি ভোটার ঈদের নামাজের মতো আমাকে ভোট দেওয়ার জন্য এক কাতারে সামিল হয়েছেন। সেখানে সব দলের ভোটারই থাকতে পারে', যোগ করেন তিনি। অঞ্চলভিত্তিক এই মেরুকরণের বিষয়ে মত দেন সেখানকার প্রবীণ ভোটার জলিল মণ্ডলও। তিনি বলেন, 'ভেড়ামারার লোকজন বারবার এমপি পেয়েছে। এবার আমরা চাই, আমাদের ঘরের ছেলে সংসদে যাক।' 'আওয়ামী লীগের শতভাগ নেতাকর্মী নৌকার পক্ষে মাঠে না নামলে ইনুর জয়ী হওয়া কতটা কঠিন হবে,' উল্লেখ করে জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সেক্রেটারি আব্দুল আলীম স্বপন বলেন, 'গত নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের নেতারা শেষ মুহূর্তে মাঠে নেমেছিলেন। এবারও শেষ পর্যন্ত সবাই নৌকাতেই আসবেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক কখনো নৌকার বিরুদ্ধে যেতে পারেন না। সেক্ষেত্রে এবারও আমরাই জয়ী হবো বলে আশাবাদী।' এ বিষয়ে মিরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র এনামুল হক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নৌকার পক্ষেই আছি। আওয়ামী লীগের যারা ট্রাকের পক্ষে ছিলেন, তারাও এখন চুপি চুপি নৌকার দিকে চলে আসছেন। নৌকার জয় সুনিশ্চিত।' ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাহবুব উল আলম হানিফের ভাই রফিকুল আলম চুন্নুকে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুল আরেফিনের সঙ্গে দেখা গেলেও তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি ভেড়ামারা-মিরপুরে নির্বাচন প্রচারণায় অংশ নিচ্ছি না। আমি কুষ্টিয়া-৩ আসনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের নির্বাচনী প্রচারে আছি।' এ বিষয়ে জানতে মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সামিউল ইসলাম সানাকে ফোন করলে তিনি নির্বাচনী জনসভায় আছেন বলে ফোন কেটে দেন। আবার ফোন করে কার জনসভায় আছেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ট্রাক প্রতীক পাওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুলের জনসভায় আছি।'
সমঝোতার ভিত্তিতে নৌকা প্রতীক নিয়ে কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের শরিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু। একই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামারুল আরেফিন।
ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে অসুস্থ যুবদল নেতাকে হাসপাতালে নিলো কারা কর্তৃপক্ষ
হবিগঞ্জ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক জালাল আহমদকে (৪৫) ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হাসপাতালে নিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার রাতে হবিগঞ্জ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সোমবার বিকেলে হবিগঞ্জ কারাগারে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন জালাল। কারাগারেই তার ইসিজি (ইলেকট্রো কার্ডিওগ্রাম) করা হয়েছিল। এরপর তাকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। জালালের স্বজনের অভিযোগ, অনুরোধ করার পরও পুলিশ তার ডান্ডাবেড়ি খুলে দেয়নি। হবিগঞ্জ জেল সুপার মতিয়ার রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'জালাল অসুস্থ, তবে যে কোনো সময় তিনি সুস্থ হয়ে পালিয়ে যেতে পারেন।' বিএনপির সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন বলেন, 'একজন অসুস্থ রাজনৈতিক নেতাকে এভাবে হাসপাতালে আনা সব রাজনীতিকের জন্য অপমানের।' জালালের আইনজীবী আফজাল আহমদ এই প্রতিবেদককে জানান, 'প্রায় তিন মাস আগে একটি পুরনো মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ২৮ অক্টোবর আদালত তাকে জামিন দেন। ওই দিন চুনারুঘাট উপজেলায় পুলিশকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় জেল গেট থেকে তাকে আবারও গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা।' আফজাল আরও বলেন, 'জালালের বিরুদ্ধে মোট ৩৫টি মামলা রয়েছে। বাকি সব মামলায় জামিনে আছেন তিনি। তারপরও তাকে বেঁধে হাসপাতালে পাঠিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।'
হবিগঞ্জ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক জালাল আহমদকে (৪৫) ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হাসপাতালে নিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার রাতে হবিগঞ্জ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
নৌকার প্রচার মাইকের আওয়াজ শুনলেই লোকজন পালিয়ে যাচ্ছে: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আগামী ৭ জানুয়ারি 'আমরা আর মামুদের' একদলীয় ডামি নির্বাচন ঘিরে একদিকে চলছে রীতিমত রঙ-তামাশা, আর অন্যদিকে নৌকা-ডামির কামড়া-কামড়ি। তিনি বলেন, গোলাগুলি, খুনোখুনি, সংঘাত-সহিংসতায় জনপদগুলো বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে সবখানে। 'পূর্বনির্ধারিত ফলাফলের এই নির্বাচনে ভোটারদের ন্যূনতম আগ্রহ নেই' মন্তব্য করে রিজভী বলেন, 'গণতান্ত্রিক বিশ্বকে তথাকথিত ভোটের উৎসব দেখানোর জন্য অত্যাচার-নিপীড়ন থেকে তাদের রেহাই নেই। সাধারণ মানুষকে জোর করে মিছিলে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে। এলাকা ছাড়া করার ভয় দেখানো হচ্ছে। নৌকার প্রচার মাইকের আওয়াজ শুনলেই লোকজন সেখান থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন, ভোটের উৎসবের বদলে আতঙ্ক। 'দেশ এখন আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'রাষ্ট্রযন্ত্রকে নামানো হয়েছে "আমি আর ডামি"র ভোটরঙ্গে। সরকারি কর্মকর্তারাও নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী-ডামি মিছিল বের হচ্ছে। শেখ হাসিনা বলছেন, "এই নৌকা নূহ নবীর"। আর তার ডামি পক্ষ বলছেন, "নৌকা পাগলদের মার্কা"। বিভিন্ন স্থানে ভোট কিনতে প্রকাশ্যে টাকা বিলি করা হচ্ছে।' 'আওয়ামী লীগের নেতারা বক্তব্যে স্বীকার করছেন যে, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমরা ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় এসেছি। এক প্রার্থী আরেক প্রার্থীর কল্লা কেটে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন, যোগ করেন তিনি। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, 'নির্বাচন কমিশন বসে বসে তামাশা দেখছে। সারাদেশে বন্দুক-দা-চাপাতির যুদ্ধ লেগেছে, সেদিকে ইসির ভ্রূক্ষেপ নেই। তাদের কাজই হলো বিএনপিকে শায়েস্তা করার হুমকি দেওয়া। ইসির কাছে নির্বাচন গৌণ। তারা চাচ্ছেন মেরে-কেটে হুমকি-ধামকি দিয়ে যে যেভাবে পারে ভোটকেন্দ্রে নাবালক-সাবালক-ভোটার-অভোটার জোগাড় করে লোকারণ্য দেখাও। এটাই গণভবনের নির্দেশ, শেখ হাসিনার উৎসবমুখর নির্বাচনী মডেল।' তিনি বলেন, 'গণতান্ত্রিক বিশ্বের চোখে ধুলো দিতে এত আয়োজন আখেরে কোনো কাজে আসবে না। ভোট নাটক যতই করেন কোনো লাভ নেই। শেখ হাসিনা বাস্তবে দেশকে স্থায়ীভাবে একটি নির্বাচনবিহীন রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন।' সরকারকে উদ্দেশ্য করে রিজভী বলেন, 'জনগণ ভোট নাটক বানচাল করে আপনাদের পতন ঘটাবেই। জনগণের সম্মিলিত শক্তির কাছে আওয়ামী পরিকল্পনা তছনছ হয়ে যাবে।' তিনি আরও বলেন, 'বিএনপিসহ সব দলকে বাদ দিয়ে এই পাতানো নির্বাচনের অন্যতম মদদদাতা হিসেবে পার্শ্ববর্তী দেশের নাম সর্বজনবিদিত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বাংলাদেশে এসে একদলীয় নির্বাচনের পক্ষে সাফাই গাইছেন। ভারতীয় কূটনীতিকরা বাংলাদেশে এসে বলেছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্থিতিশীলতা চান, বাংলাদেশের গণতন্ত্র-মানুষের অধিকার চান না। এখন তাদের থলের বেড়াল বের হতে শুরু করেছে। ভারত মনোনীত প্রার্থীরা বীরদর্পে বলছেন, "আমাকে ভারত মনোনয়ন দিয়েছে।আমি ভারতের প্রার্থী। আমি এখানে হারার জন্য আসিনি"।' মেহেরপুর-১ (মুজিবনগর, সদর) আসনের সংসদ সদস্যের এক বক্তব্যের উল্লেখ করে রিজভী বলেন, 'তিনি বলেছেন যে, "আমি ভারতের প্রার্থী। আমি এখানে হারার জন্য আসিনি।" তাহলে ভারত এখন তাদের এদেশীয় অনুচরদের নমিনেশনও দিচ্ছে? অথচ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা, প্রতিবাদেরও সাহস পায় না সরকার বা নির্বাচন কমিশন। আমরা জানতে চাই প্রফেসর আব্দুল মান্নানের মতো আর কে কে ভারতের প্রার্থী তার তালিকা প্রকাশ করা হোক। দেশের জনগণের প্রতি আমাদের আহ্বান গণতন্ত্র হত্যার জন্য ভারতের প্রার্থীদের বিজয়ী করার এই পাতানো নির্বাচনে কেউ ভোট দেবেন না। দেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে না চাইলে ভোট বর্জন করুন। তারা নির্বাচিত হলে দেশকে ভারতের হাতে তুলে দেয়াটা অসম্ভব কিছু না।' তিনি বলেন, 'পুলিশের দাবি, গাজীপুরের শ্রীপুরে রেললাইন কেটে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার মূলে নাকি ছিলেন ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবির। মিথ্যাচারেরও একটি সীমা থাকে। পুলিশের দুরভিসন্ধিমূলক ও কল্পিত নির্দেশনার এমন নাটক তারা নিয়মিত করছে। ভুয়া পাতানো নির্বাচনকে জায়েজ করার জন্য প্রতিটি আগুন সন্ত্রাসও সরকারের লোকজনের পরিকল্পিত ও পাতানো নাটক। এ পর্যন্ত যারা ধরা পড়েছে তাদের অনেকে সরকারি দলের লোকজন। আগুন সন্ত্রাস আওয়ামী লীগের মজ্জাগত।' 'বিএনপি সহিংসতা ঘৃণা করে' মন্তব্য করে রিজভী বলেন, 'বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের আটক করে, গুম করে, নির্যাতন চালিয়ে, শেখানো বুলি দিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করে যারা মনে করছেন যারা পার পেয়ে যাবেন, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন।'
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আগামী ৭ জানুয়ারি 'আমরা আর মামুদের' একদলীয় ডামি নির্বাচন ঘিরে একদিকে চলছে রীতিমত রঙ-তামাশা, আর অন্যদিকে নৌকা-ডামির কামড়া-কামড়ি।
হেফাজতে ইসলামের ২৯ ডিসেম্বরের মহাসমাবেশ স্থগিত
ঢাকায় আগামী ২৯ ডিসেম্বর হেফাজতে ইসলামের ডাকা মহাসমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সংগঠনটির প্রচার সম্পাদক মুফতি কিফায়াতুল্লাহ আজহারীর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, দেশের চলমান সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে হেফাজতে ইসলামের নীতিনির্ধারনী ফোরাম মহাসমাবেশ স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মামুনুল হকসহ কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি, মামলা প্রত্যাহারসহ কয়েকটি দাবিতে গত ৮ ডিসেম্বর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। ওই সমাবেশে ঢাকায় ২৯ ডিসেম্বর মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দেওয়া হয়। হেফাজতে ইসলামের নীতিনির্ধারণী ফোরাম শিগগির পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
ঢাকায় আগামী ২৯ ডিসেম্বর হেফাজতে ইসলামের ডাকা মহাসমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে।
গণতন্ত্র মঞ্চের কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা
প্রতিবাদ কর্মসূচিতে পুলিশি বাধা ও হামলার অভিযোগ তুলেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। দলটির দাবি, আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় 'একতরফা ভোট বর্জন করুন' আহ্বানে মতিঝিল বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে সমাবেশ করে তারা। সমাবেশ শেষে মিছিল করতে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয় ও হামলা করে। এতে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। দলটি আরও দাবি করেছে, সমাবেশস্থলে আসার পথেও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির মিছিলে পুলিশ কয়েক দফায় বাধা দিয়েছে এবং তাদের ব্যানার কেড়ে নিয়েছে। গণতন্ত্র মঞ্চ প্রতিবাদী কর্মসূচি হিসেবে আজ মতিঝিল থেকে ধূপখোলা পর্যন্ত গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিলি কর্মসূচি পালন করেছে। এ উপলক্ষে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি'র সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আবু ইউসুফ সেলিম। সভা পরিচালনা করেন নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার। সমাবেশে বক্তারা বলেন, 'আওয়ামী লীগ বলছে, ভোটকেন্দ্রে ভোটার আনাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে উৎসব করে ভোট দিতে যায়। তারা সামাজিক নিরাপত্তাভোগীদের কার্ড জমা রেখে ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধ্য করতে চাচ্ছে।' তারা আরও বলেন, 'সরকার একটা ডামি নির্বাচন আয়োজন করতে পুলিশ ও প্রশাসনকে দলীয় অঙ্গসংগঠনের মতো ব্যবহার করছ। পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা ও বিভিন্ন বাহিনীকে দিয়ে আওয়ামী লীগ এখন জনগণকে জোর করে ভোটকেন্দ্রে নিতে চায়।' তারা বলেন, 'সিপিডির গবেষণায় দেখা গেছে লক্ষ-কোটি টাকা লুট হয়েছে। রাজনৈতিক বাগাড়ম্বর বাদ দিয়ে যথাযথ অনুসন্ধান করুন। অর্থমন্ত্রীর দেখা নেই বাজেটের পর থেকে। সরকারের স্বেচ্ছাচারিতায় দেশ আরও বিপদে পরবে। এর জন্য দায়ী থাকবেন বর্তমান সরকার।' অবিলম্বে সংসদ ভেঙে দিয়ে সব দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, 'অন্যথায় দেশকে ভয়াবহ সংকট থেকে উদ্ধার করা যাবে না।'
প্রতিবাদ কর্মসূচিতে পুলিশি বাধা ও হামলার অভিযোগ তুলেছে গণতন্ত্র মঞ্চ।
আজ তারাগঞ্জ ও পীরগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী সভা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মঙ্গলবার রংপুরের তারাগঞ্জ ও পীরগঞ্জ উপজেলায় দুটি পৃথক নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেবেন। রংপুরে তার শেষ সফর ছিল গত ২ আগস্ট। বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে রংপুরসহ অন্যান্য জেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করতে তিনি এ সফর করছেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ রংপুর জেলায় রংপুর-১ ও রংপুর-৩ আসন দুইটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিয়েছে। বাকি চারটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা লড়ছেন। রংপুর-২ (তারাগঞ্জ ও বদরগঞ্জ) থেকে লড়ছেন আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী, রংপুর-৪ (কাউনিয়া ও পীরগাছা) থেকে টিপু মুনশি, রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) থেকে রাশেক রহমান ও রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) থেকে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুরে দলের মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চেয়ে রংপুর-২-এর তারাগঞ্জ ও রংপুর-৬-এর পীরগঞ্জে জনসভায় ভাষণ দেবেন। আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী রংপুর-২ ও স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী রংপুর-৬ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য। প্রধানমন্ত্রীর উভয় সভাতেই প্রচুর জনসমাগমের আশা করা হচ্ছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সূত্রে জানা গেছে—দিনাজপুর, গাইবান্ধা, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওসহ রংপুরের আশেপাশের জেলা থেকে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশগুলোয় যোগ দেবেন। রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাজেদ আলী বাবুল দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, মঙ্গলবার সকালে শেখ হাসিনা সৈয়দপুর বিমানবন্দরে পৌঁছবেন। দুপুরে তিনি তারাগঞ্জের ওয়াকফ স্টেট কলেজ মাঠে ও বিকেলে পীরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জনসভায় ভাষণ দেবেন। ২০০৮ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা তিনবার রংপুর-৬ আসনে নির্বাচিত হয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর আসনটি এবার ছেড়ে দেওয়ায় ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি ২০১৪ ও ২০১৮ সালে পরপর দুটি উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। সমাবেশের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রতিষ্ঠিত পীরগঞ্জের ফতেহপুর গ্রামে 'জয় সদন'-এ তার আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা ও সেখানে দুপুরে খাবেন বলে জানা গেছে। তিনি তার প্রয়াত স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়ার কবরে দোয়া ও পবিত্র কোরআন থেকে ফাতেহা পাঠ করবেন। পীরগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পীরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র তানজিবুল ইসলাম শামীম ডেইলি স্টারকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর সফরের সবকিছু সুষ্ঠুভাবে রাখতে ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, 'পীরগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী যে উন্নয়ন করেছেন তা চোখে পড়ার মতো। এই উপজেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন কল্পনার বাইরে ছিল। এ ছাড়া, নেভাল একাডেমি ও ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করায় পীরগঞ্জবাসী প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।' আজকের এই সমাবেশে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে তারা আরও প্রতিশ্রুতি আশা করছেন বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মঙ্গলবার রংপুরের তারাগঞ্জ ও পীরগঞ্জ উপজেলায় দুটি পৃথক নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেবেন।
যতই কেরামতি করেন, ভোটকেন্দ্রে ভোটার পাবেন না: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভাগ-বাটোয়ারার নির্বাচন জমছে না দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েছে প্রধানমন্ত্রী ও তার ডামি নির্বাচন কমিশন। আজ সোমবার এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। রিজভী বলেন, 'এখন তারা ভোটারদের হুমকি দিতে শুরু করেছেন। পুরো বাংলাদেশকে জেলখানা বানানো হয়েছে। জেলের ভেতরে যাদের নিক্ষেপ করা হয়েছে তাদের তিলে তিলে নির্যাতন করে হত্যা করা হচ্ছে।' তিনি বলেন, 'একদিকে নৌকার প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা হুমকি দিচ্ছে ভোটকেন্দ্রে না গেলে বাড়িছাড়া করা হবে। অপরদিকে নির্বাচন কমিশনাররা জেল-জরিমানার হুমকি দিচ্ছেন। কেউ ভোট প্রতিহত করার চেষ্টা করলে ৭ বছরের জেল হবে, অর্থদণ্ড হবে। ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য লিফলেট বিতরণ করলে গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।' 'ইসি মো. আনিছুর রহমান প্রতিদিন গণভবন থেকে আসা ফরমান ঘোষণা করছেন। একতরফা পাতানো নির্বাচনের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত ১৮ কোটি জনগণকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গলির গুণ্ডাদের মতো শাসাচ্ছে। বিএনপিকে শায়েস্তার হুমকি দিচ্ছেন আনিছুর রহমানরা,' বলেন তিনি। রিজভী আরও বলেন, 'বাংলাদেশের সংবিধানে ভোট দেওয়াও যেমন মানুষের অধিকার, তেমনি ভোট না দেওয়াও মানুষের মৌলিক অধিকার। ভোট দেওয়ার জন্য কাউকে বাধ্য করা যাবে না।' 'কিন্তু নৌকা ও ডামিরা ভোট দিতে না গেলে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। যারা ভোটকেন্দ্রে যাবে না, তাদের গায়েবি নাশকতা মামলার ভয় দেখানো হচ্ছে,' বলেন তিনি। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, 'দেশের বিভিন্ন স্থানে জনগণের মৌলিক অধিকারের দাবিতে লিফলেট বিতরণকালে বিএনপির শতশত নেতাকর্মীকে আটক করে নির্যাতন করছে পুলিশ। মানিকগঞ্জে বিএনপির লিফলেট নিয়ে পড়ার কারণে এক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ।' নির্বাচন কমিশনারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'এই একদলীয় ভোট জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। যত ভয়ভীতি-কেরামতি যাই করেন, ভোটকেন্দ্রে ভোটার পাবেন না।' তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক বিশ্বের চোখে ধুলো দিতে ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি দেখানোর জন্য ভোটারদের বাধ্য করতে অভিনব অমানবিক নির্যাতনের পন্থা প্রয়োগ করছে সরকার। পত্রিকায় প্রতিদিন খবর হচ্ছে, গণভবনের নির্দেশে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় কার্ডের মাধ্যমে সুবিধাভোগী প্রায় দুই কোটি মানুষকে টার্গেট করেছে আওয়ামী লীগ এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ অনুগত প্রশাসন। উপকারভোগীদের কার্ড জমা নেওয়া হচ্ছে, ফেরত দেওয়া হবে ভোট দেওয়া সাপেক্ষে। ভোটকেন্দ্রে না গেলে কার্ড বাতিলের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।' 'শেখ হাসিনা এখন হতদরিদ্রদের খাবার অধিকারও ছিনিয়ে নিচ্ছেন' মন্তব্য করে রিজভী বলেন, 'ভাতার মালিক আওয়ামী লীগ সরকার না। এর মালিক দেশের জনগণ। জনগণের টাকা এবং বিদেশিদের সহায়তায় গরিবের জন্য অনুদান দেওয়া হয়। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় কার্ডের মাধ্যমে সুবিধা দেওয়া বিএনপির অবদান।'
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভাগ-বাটোয়ারার নির্বাচন জমছে না দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েছে প্রধানমন্ত্রী ও তার ডামি নির্বাচন কমিশন।
‘মামা স্বতন্ত্র প্রার্থীর হয়ে কাজ করায়’ ভাগ্নেকে ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাজী রিফাতকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে রিফাতের দাবি, তার মামা স্বতন্ত্র প্রার্থীর হয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় কাজ করায় তাকে এই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গত রোববার রাতে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মুর্তজা হোসেন ওরফে তমাল ও সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সিদ্দিকীর সই করা এক চিঠিতে এই অব্যাহতি দেওয়া হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বোয়ালমারী উপজেলা শাখার এক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাজী রিফাতকে অব্যাহতি দেওয়া হল। কাজী রিফাত (২৪) বোয়ালমারী পৌরসভারআট নম্বর ওয়ার্ডের চতুল মহল্লার বাসিন্দা। তিনি বোয়ালমারী সরকারি কলেজের ডিগ্রি শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, 'আমি দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো কাজ করিনি। আমার মামা জেলা কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লিটন মৃধা। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুর রহমানের (ইগল) পক্ষে কাজ করছেন। সেজন্য মামার অপরাধে ভাগ্নেকে সাজা দেওয়া হয়েছে।' 'ছাত্রলীগের উপজেলা সভাপতি ও সম্পাদক আমাকে অব্যাহতি দিতে পারেন না। তারা আমাকে শোকজ করে বিষয়টি জেলা কমিটিতে পাঠাতে পারেন। আমাকে শোকজ করা হয়নি। রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা ছাত্রলীগের ফেসবুক গ্রুপে চিঠিটি দেওয়া হয়। সেটি দেখে অন্যরা আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়,' বলেন তিনি। এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সিদ্দিকী বলেন, 'বিভিন্ন প্রোগ্রামে তাকে দলীয় অনেক দায়িত্ব দেবার পরেও সে দায়িত্ব পালন করতো না, প্রোগ্রামে অংশ নিত না। গত ৬ মাস ধরে সে কোনো সংগঠনিক কাজে অংশ নিচ্ছিল না। তাকে বারবার বলার পরও তিনি সক্রিয় না হওয়ায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির সঙ্গে পরামর্শ করে কাজী রিফাতকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।' 'এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই' মন্তব্য করে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী ওরফে রিয়ান বলেন, 'এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেব।'
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাজী রিফাতকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
পটুয়াখালীতে অন্তঃকোন্দলের জেরে দলীয় কার্যালয়ের ভেতর শ্রমিক লীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম
পটুয়াখালীতে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে এক শ্রমিক লীগ নেতাকে কুপিয়ে জখমের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। আহত হন শ্রমিক লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো. সজিব মৃধা (৩৫)। আহতের অভিযোগ, উপজেলা যুবলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক রকিবুল ইসলাম (রকি) ও উপজেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জনি সরদার এ ঘটনায় জড়িত। স্থানীয়রা জানান, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মুহিবুর রহমানের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা শেষে মো. সজিব দলীয় কার্যালয়ে যান। সেসময় কয়েকজন ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন সজিব মৃধা বলেন, 'যখন রামদা নিয়ে ওরা আমার ওপর হামলা করেছে তখন দলের কার্যালয়ের ভেতর অনেকেই উপস্থিত ছিল। তারা কেউই আমাকে রক্ষা করেনি। এ হামলায় রকি ও জনির সঙ্গে মুছা, সুমন, মহিবুল্লাহ, মোস্তফাসহ অন্তত ১০-১২ জন সন্ত্রাসী জড়িত ছিল।' অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব তালুকদার বলেন, 'ঘটনার সময় আমি বাসায় ছিলাম। এ ব্যাপারে  কিছু জানি না। আজ সকালেই এ ঘটনা শুনলাম। নিজেদের মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা নিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে। খোঁজ নিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মিনহাজ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, 'সজীবের পিঠে ছুরি বা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। ডান পায়ের গোড়ালির ওপরে কোপের চিহ্ন আছে। পায়ের কোপের আঘাতটি গভীর এবং হাড় কেটে গেছে। তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।' এ ব্যাপারে কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, 'খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। সেখান থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মেহেদী নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনাননুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
পটুয়াখালীতে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে এক শ্রমিক লীগ নেতাকে কুপিয়ে জখমের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
৯২ হাজার কোটি টাকা কোথায় আছে, সিপিডি সন্ধান দিলে জবাব দেবেন কাদের
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এই ৯২ হাজার কোটি টাকা কোথায় গেল, সেটা একটু জানতে চাই। এই টাকাগুলো কোথায় আছে? আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। একজন গণমাধ্যমকর্মী প্রশ্ন করেন, পরশু সিপিডি একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে গত ১৫ বছরে ৯২ হাজার কোটি টাকা অর্থনৈতিক খাতে লুটপাট হয়েছে। গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়, এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের অবস্থান কী? জবাবে কাদের বলেন, 'আমার জবাবে একটাই, এই ৯২ হাজার কোটি টাকা কোথায় গেল, সেটা একটু জানতে চাই। এই টাকাগুলো কোথায় আছে? সন্ধান দিলে তখন আমরা জবাব দেবো। আমাদের জানা নেই।' প্রসঙ্গত, ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২৪টি বড় ধরনের ঋণ অনিয়মের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাত থেকে ৯২ হাজার কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ হয়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। ওবায়দুল কাদের বলেন, 'নির্বাচন অনুষ্ঠানে বিঘ্ন সৃষ্টি করবে তাদেরকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া এবং তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নীতি প্রয়োগ করা এটা তো আমেরিকারই বহুল প্রচারিত ঘোষণা। আইআরআই এবং এনডিআরের পাঁচ জন প্রতিনিধি এখন বাংলাদেশে আছে। আমরা এ ব্যাপারে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।' স্বতন্ত্র প্রার্থীদের আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীরা বাধা দিচ্ছে, নির্বাচন কমিশনের কাছে তারা বিচারের জন্য দাবি জানিয়েছে। নির্বাচন কমিশন বাধা দেবেন, দলীয়ভাবে আপনারা কোনো মেসেজ দেবেন কি না গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে কাদের বলেন, 'নির্বাচন সংক্রান্ত যত অভিযোগ সেটা নির্বাচন কমিশনের বিষয়। নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, নির্বাচনে আচরণবিধি যাতে যথাযথভাবে প্রয়োগ হয় এবং এখানে যদি কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা হয়—এটা দেখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। 'এখানে আমি কোনো দল বুঝি না। যারা এক হাজার ৮৯৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে; আওয়ামী লীগ আছে, অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে এবং সতর্ক। সবাই প্রতিদ্বন্দ্বী। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা যদি বিঘ্নিত হয়, এই প্রতিযোগিতা যদি বিশৃঙ্খলার আবর্তে পড়ে, নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নেবে এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিলেও দল হিসেবে আওয়ামী লীগ কোনো আপত্তি করবে না,' বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি আরও বলেন, 'আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে চাই। কাজেই আমাদের দলের কেউ—নৌকার প্রার্থী অথবা স্বতন্ত্র প্রার্থী যেখানেই থাকুক, কারও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কোনো অধিকার নেই। নির্বাচনবিরোধী সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ার কোনো সুযোগ নেই। এটা আমরা সমর্থন করি না এবং নির্বাচন কমিশন যে ব্যবস্থা নেবে, আমরা সেটাকে সমর্থন করি।' একজন গণমাধ্যমকর্মী প্রশ্ন করেন—গত ১৫ বছরে এমন কী ঘটেছে যে এত উন্নয়নের পরও আওয়ামী লীগের এত সমালোচনা। একা একা নির্বাচন করতে হচ্ছে; জবাবে তিনি বলেন, 'যারা নির্বাচন করছে না তাদের গিয়ে প্রশ্নটা করুন। এই প্রশ্নের জবাব আমি কেন দেবো?' কাদের বলেন, 'আমরা দেশ পরিচালনা করছি। সব কিছু শতভাগ পারফেক্ট হবে এমন দাবি আমরা করি না। সমালোচনার বিষয় থাকলে সমালোচনা হবে। সমালোচনা শুদ্ধ করে। সমালোচনা-বিতর্ক হলে তখন শুদ্ধ হওয়ার একটা সুযোগ থাকে।' সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, 'আমরা আর মামুরা' ভোট হচ্ছে—এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'বদিউল আলম মজুমদার বিএনপির একজন খাস দালাল। বিএনপির (জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব) রিজভী যা বলেন, উনিও তাই বলছেন।' নির্বাচনী শান্তিপূর্ণ পরিবেশের ক্রমেই অবনতি হচ্ছে আমরা দেখছি। প্রতিদিনই সংঘাতের খবর আমরা দেখছি, আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটছে এ ব্যাপারে কাদের বলেন, 'সংঘাতের আশঙ্কা সব সময় আমাদের এ অঞ্চলে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে থাকে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ১১৭ জন...এখানে হচ্ছে কিন্তু আমি বড় ধরনের কোনো সংঘাত হওয়ার আশঙ্কা করছি না। আমার দলের পক্ষ থেকে বলতে চাই, আমাদের নেত্রীর এ ব্যাপারে টলারেন্স জিরো। আওয়ামী লীগ হোক, স্বতন্ত্র প্রার্থী হোক 'আওয়ামী লীগে নামে যারা শান্তি বিঘ্নিত করবে, নির্বাচনের পরিবেশকে দূষিত করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। দলের পক্ষ থেকে এটা আমাদের প্রত্যাশা,' যোগ করেন তিনি।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এই ৯২ হাজার কোটি টাকা কোথায় গেল, সেটা একটু জানতে চাই। এই টাকাগুলো কোথায় আছে?
নারায়ণগঞ্জে অনাবিল পরিবহনের বাসে আগুন
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতরাত ২টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড মোড় এলাকায় অনাবিল পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। পরে আদমজী ইপিজেড ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, রাত পৌনে তিনটার সময় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।  এ ঘটনায় কোনো হতাহত নেই।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
আওয়ামী লীগের অগ্রাধিকার কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দুর্নীতি দমন
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের খসড়া তৈরির সঙ্গে জড়িত একাধিক নেতা জানিয়েছেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য। দলটি আগামী পাঁচ বছরে দেড় কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারে, যা গত বছরের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলে গৃহীত ঘোষণায়ও উল্লেখ করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রাজ্জাক গত জানুয়ারিতে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছিলেন, দলের পরবর্তী ইশতেহারে প্রধানত ২০২২ সালের ঘোষণায় নির্ধারিত প্রধান লক্ষ্যগুলো একত্রিত করা হবে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে বেকারত্বের হার ছিল তিন দশমিক ৫৩ শতাংশ। আবারও ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগের লক্ষ্য হবে এই হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকার কৃষি, শিল্প, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামো খাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ নিশ্চিত করবে। ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা দলটির নেতারা বলেছেন, আওয়ামী লীগ স্মার্ট নাগরিকত্ব, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সমাজ তৈরির মাধ্যমে দেশকে ডিজিটাল থেকে স্মার্টে রূপান্তর করার প্রতিশ্রুতি দেবে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত ও স্মার্ট দেশে পরিণত করার প্রতিশ্রুতিও দিতে পারে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রাখার প্রতিশ্রুতি দিতে পারে এবং আমদানি ও রপ্তানির মধ্যে ব্যবধান কমানোর উদ্যোগ নিতে পারে। দলটি ব্যাংক ও আর্থিক খাতের জন্য সংস্কার প্রস্তাবের অঙ্গীকার করবে বলেও আশা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আগামী বুধবার ঢাকার একটি হোটেলে দলীয় ইশতেহার ঘোষণা করবেন। সূত্রের খবর, আওয়ামী লীগ এবার পুস্তিকার বদলে ম্যাগাজিন আকারে ইশতেহার ছাপাবে। আওয়ামী লীগ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানো এবং কৃষিকাজ ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণে বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিতে পারে। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জবাবদিহিতা এবং সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ নির্মূলও তাদের এজেন্ডায় থাকবে। প্রশাসনে দুর্নীতি, অবৈধ সম্পদ, ঘুষ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের প্রতিশ্রুতি দেবে দলটি। সব স্তরে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসনের বিষয়টিও ইশতেহারে গুরুত্ব পেতে পারে। দলটির আরেকটি লক্ষ্য হবে আরও এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করা এবং জাতীয় ও প্রধান সড়ক প্রশস্ত করা, যাতে যোগাযোগ দ্রুততর হয়। একই সঙ্গে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হবে। আগামী সাত বছরে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর, নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল, গাবতলী থেকে কাঁচপুর সেতু, কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ এবং সাভার থেকে ভাটারা পর্যন্ত মেট্রোরেল সার্ভিস চালু করা হবে। ক্ষমতায় গেলে দলটি উৎপাদনশীলতা বাড়াতে কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতে সাশ্রয়ী প্রযুক্তি চালু করবে। দলটি বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অপপ্রচার এবং ভুল উপস্থাপনের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রতিশ্রুতিও দেবে। তথ্যের অবাধ প্রবাহ সমুন্নত রাখতে এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হামলা ও মিথ্যা মামলা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জাতির পিতার পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে এনে তাদের বিরুদ্ধে সাজা কার্যকর করা হবে। আওয়ামী লীগ পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রাখার প্রতিশ্রুতি দিতে পারে এবং আমদানি ও রপ্তানির মধ্যে ব্যবধান কমানোর উদ্যোগ নিতে পারে। দলটি ব্যাংক ও আর্থিক খাতের জন্য সংস্কার প্রস্তাবের অঙ্গীকার করবে বলেও আশা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আগামী বুধবার ঢাকার একটি হোটেলে দলীয় ইশতেহার ঘোষণা করবেন। সূত্রের খবর, আওয়ামী লীগ এবার পুস্তিকার বদলে ম্যাগাজিন আকারে ইশতেহার ছাপাবে। আওয়ামী লীগ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানো এবং কৃষিকাজ ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণে বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিতে পারে। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জবাবদিহিতা এবং সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ নির্মূলও তাদের এজেন্ডায় থাকবে। প্রশাসনে দুর্নীতি, অবৈধ সম্পদ, ঘুষ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের প্রতিশ্রুতি দেবে দলটি। সব স্তরে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসনের বিষয়টিও ইশতেহারে গুরুত্ব পেতে পারে। দলটির আরেকটি লক্ষ্য হবে আরও এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করা এবং জাতীয় ও প্রধান সড়ক প্রশস্ত করা, যাতে যোগাযোগ দ্রুততর হয়। একই সঙ্গে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হবে। আগামী সাত বছরে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর, নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল, গাবতলী থেকে কাঁচপুর সেতু, কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ এবং সাভার থেকে ভাটারা পর্যন্ত মেট্রোরেল সার্ভিস চালু করা হবে। ক্ষমতায় গেলে দলটি উৎপাদনশীলতা বাড়াতে কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতে সাশ্রয়ী প্রযুক্তি চালু করবে। দলটি বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অপপ্রচার এবং ভুল উপস্থাপনের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রতিশ্রুতিও দেবে। তথ্যের অবাধ প্রবাহ সমুন্নত রাখতে এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হামলা ও মিথ্যা মামলা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জাতির পিতার পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে এনে তাদের বিরুদ্ধে সাজা কার্যকর করা হবে। আওয়ামী লীগ পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রাখার প্রতিশ্রুতি দিতে পারে এবং আমদানি ও রপ্তানির মধ্যে ব্যবধান কমানোর উদ্যোগ নিতে পারে। দলটি ব্যাংক ও আর্থিক খাতের জন্য সংস্কার প্রস্তাবের অঙ্গীকার করবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের খসড়া তৈরির সঙ্গে জড়িত একাধিক নেতা জানিয়েছেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য।
নৌকা-স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৩, আটক ২
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়নের যুগনীতে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ছররা গুলিবিদ্ধ হয়ে কমপক্ষে তিনজন আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রোকন মিয়া এবং যুবলীগ কর্মী এমদাদুল ও সিয়াম আছেন। তারা টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহতরা তার সমর্থক দাবি করে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের নৌকার প্রার্থী মামুনুর রশীদ মামুন হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, 'মোটরসাইকেল শোভাযাত্রায় যুগনীতে পৌঁছালে স্বতন্ত্র প্রার্থী সানোয়ার হোসেনের সমর্থকরা হামলা চালায়।' টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়।' সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমন হোসেন ডেইলি স্টারকে জানান, ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ঘটনাস্থল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী সানোয়ারের দুই সমর্থককে আটক করা হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য সানোয়ার হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।' স্থানীয় সূত্র জানায়, আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারের শুরু থেকেই এই দুই প্রার্থীর সমর্থকরা একে অপরের বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গ, নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর, হামলা ও হুমকির অভিযোগ দিয়ে আসছে। এর মধ্যে কয়েকটি ঘটনা তদন্ত করছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়নের যুগনীতে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ছররা গুলিবিদ্ধ হয়ে কমপক্ষে তিনজন আহত হয়েছেন।
পোস্তগোলায় রাইদা পরিবহনের বাসে আগুন
রাজধানীর পোস্তগোলায় রাইদা পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ রোববার দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে জুরাইনে সালাউদ্দিন পাম্পের পাশের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক (মিডিয়া সেল) শাহজাহান সিকদার দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, খবর পেয়ে পোস্তগোলা ফায়ার স্টেশনের ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নির্বাপণে কাজ করে। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
রাজধানীর পোস্তগোলায় রাইদা পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
খাজনা-ট্যাক্স না দিলে শাস্তি পেতে হবে: কাদের
বিএনপির অসহযোগ আন্দোলন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খাজনা-ট্যাক্স না দিলে শাস্তি পেতে হবে। আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। কাদের বলেন, 'খাজনা দেবে না, ট্যাক্স দেবে না, ইউটিলিটি বিল দেবে না; এটা তাদের বাপ-দাদার সম্পত্তি? এ ধরনের উদ্ভট, হাস্যকর; দেশ কি আরেকবার স্বাধীন হচ্ছে? এটা কি বঙ্গবন্ধুর অসহযোগ? কী দুঃসাহস! মাথা খারাপ হয়ে গেছে। 'নির্বাচন করলে ব্যর্থ, আন্দোলন করে ব্যর্থ, এখন তাদের সামনে আর কী আছে? এই নির্বাচন বর্জন করার মধ্য দিয়ে তাদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব আরও সংকুচিত হবে। আরও সংকুচিত হবে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ। অনিশ্চয়তা বাড়বে এবং নেতিবাচক রাজনীতির জন্য; সন্ত্রাসের পথ তারা বেছে নিয়েছে, এই সন্ত্রাসের রাজনীতি আর গণতন্ত্র বিপরীতমুখী,' বলেন কাদের। যারা সন্ত্রাসের রাজনীতি করে তাদের মুখে গণতন্ত্রের বুলি শোভা পায় না মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, 'সন্ত্রাস করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয় না। দুনিয়ার কোথাও হয়নি।' অসহযোগ আন্দোলন প্রসঙ্গে কাদের আরও বলেন, 'বিএনপি ট্যাক্স দেবে না। ট্যাক্স না দিলে জেলে যেতে হবে। ইউটিলিটি বিল না দিলে শাস্তি হবে। বিদ্যুতের বিল না দিলে লাইন কাটা যাবে। পানির বিল না দিয়ে পানির লাইন কেটে যাবে। সোজা কথা। খাজনা-ট্যাক্স না দিলে শাস্তি পেতে হবে। 'অসহযোগ করবেন, ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন দলের লোকদের নিষেধ করছেন, আঙ্গুল ফুলে অনেকেই কলাগাছ। আগেই হয়ে গেছে। এদের অনেকেরই ব্যাংকে লেনদেন আছে। কাজেই তারা তারেক রহমানের ডাক শুনতে গেলে, আন্দোলনের ডাক শুনতে গেলে তাদের নিজেদেরই সব যাবে। আমও যাবে, ছালাও যাবে। কাজেই তারেকের ডাকে তারা সাড়া দেবে, এটা মনে করার কোনো কারণ নেই,' বলেন তিনি। নির্বাচনী সহিংসতা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাদের বলেন, 'আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তদন্ত করছে। তদন্তে যে-ই অপরাধী তাকে শাস্তির আওতায় আসতে হবে।' আরেক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, 'ষড়যন্ত্র হচ্ছে কিন্তু এই দেশে আর ওয়ান-ইলেভেন হবে না। কোনো সুযোগ নেই। (মার্কিন রাষ্ট্রদূত) পিটার হাস ইন্ডিয়া গেছেন। এর আগে কলম্বোও গেছেন। (ভারত) তাদের অবস্থান এক জায়গায়, তারা বাংলাদেশের নির্বাচন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করবে না। এটা তারা পরিষ্কার বলে দিয়েছে।'
বিএনপির অসহযোগ আন্দোলন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খাজনা-ট্যাক্স না দিলে শাস্তি পেতে হবে।
মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার বিএনপির গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ
নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে আগামী ২৬ ডিসেম্বর থেকে তিন দিন গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। আজ রোববার দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। রিজভী বলেন, 'আগামী ২৬, ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর এই তিন দিন বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর উদ্যোগে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালিত হবে।' তিনি বলেন, 'নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে এই গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালিত হবে।' রিজভী বলেন, 'দেশে আগামী ৭ জানুয়ারি যে নির্বাচন নাটকের মঞ্চায়ন হতে যাচ্ছে সেটা কোনো নির্বাচনই না। নির্বাচনের যে সংজ্ঞা তার মধ্যেই এটা পড়ে না। ৩০০ আসনই নৌকার। ৩০০ আসনই শেখ হাসিনার ইচ্ছাধীন। আওয়ামী লীগ নির্বাচন নিয়ে নাটক ও অভিনব তামাশা করছে। ডামি প্রার্থী, স্বতন্ত্র প্রার্থী, বিদ্রোহী ও নৌকার প্রার্থী সবই একাকার।' 'ইতোমধ্যে ফলাফল তৈরি হয়ে আছে, ৭ তারিখে শুধু ঘোষণা করা হবে। কোন আসনে কোন প্রার্থী কত ভোট পাবেন, সেটিও নির্ধারণ হয়ে গেছে। যে সরকার জনগণের অধিকার রক্ষা করে না, সম্মান দেয় না, তাদের সব কর্মকাণ্ডে অসহযোগিতা ও আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করতে হবে। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার রাস্তা উন্মুক্ত করতে হবে। তাই দেশবাসীর উদ্দেশ্যে আমাদের আহ্বান, এই ভোট বর্জন করুন। সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ুন,' যোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, 'এরা অর্থলোভ ও অমার্জিত প্রভুত্ববোধের জন্যই একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতা মুষ্টিবদ্ধ রাখতে চাচ্ছে। এদের আকৃতিতে যেমন প্রকৃতিতেও দানবীয় স্থুলতা। বাংলাদেশ এখন আওয়ামী লুটেরাদের অবৈধ বাণিজ্যকুঠিতে পরিণত হয়েছে।'
নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে আগামী ২৬ ডিসেম্বর থেকে তিন দিন গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি।
‘মানুষ পুড়িয়ে নির্বাচন বন্ধ করে ফায়দা লোটার চেষ্টা বাংলার মাটিতে চলবে না’
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষের কাছে যেতে হবে মানুষের কল্যাণের কথা বলে। মানুষের উন্নয়নের কথা বলে। মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারব সেই কথা বলে কিন্তু মানুষ পুড়িয়ে নির্বাচন বন্ধ করে ফায়দা লুটবে এটা বাংলার মাটিতে চলবে না। বড়দিন উপলক্ষে আজ রোববার দুপুরে গণভবনে খ্রিষ্টান ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বাংলাদেশ আসলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ এবং সেভাবেই আমরা দেশকে গড়ে তুলতে চাই। যদিও মাঝে অনেক বাধা এসেছি, বিপত্তি এসেছে কিন্তু যখন থেকে আওয়ামী লীগ সরকারে এসেছে তখন থেকে এই নীতি আমরা মেনে চলছি যে, স্বাধীনভাবে সব ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। সে জন্যই আমি বলেছি যে, ধর্ম যার যার উৎসব সকলের। সেই উৎসব আমরা আয়োজন করি। 'কারণ এ দেশে মুসলমান, হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ সকলে; যত ধর্মের মানুষ আছে সবাই যার যার ধর্মীয় উৎসব, তারা ধর্ম যেমন স্বাধীনভাবে পালন করতে পারেন, উৎসবটাও আমরা সকলে মিলেই কিন্তু আনন্দটা উপভোগ করি। এটা বোধ হয় বিশ্বের কাছে একটা বিরাট দৃষ্টি আমরা মনে করি। কাজেই এটা আমরা ধরে রাখতে চাই,' বলেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ১৯৭২ সালের ১১ এপ্রিল গণপরিষদ অধিবেশনের এক ভাষণে বলেছিলেন, "রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ধর্মকে বাংলার বুকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না"। এই যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষের ক্ষতি করা, এটা কখনোই কাম্য না এবং সেটা আমরা চাই না।' তিনি বলেন, 'কাজেই ধর্মীয় সংঘাত হোক সেটা আমরা চাই না। ধর্ম পালনে কেউ বাধা সৃষ্টি করুক, সেটাও চাই না।' বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে নেওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, 'যদি এই কোভিড-১৯ অতিমারি আর ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ এগুলো না হতো তাহলে হয়তো আমরা আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতাম। এখন আরেকটা দুর্ভাগ্য হলো, যিশুখ্রিষ্টের জন্মস্থান প্যালেস্টাইন, আজকে সেখানে রক্তক্ষয়ী আক্রমণ চলছে। হাসপাতালে আক্রমণ। ছোট ছোট শিশু-নারী, কেউ বাদ যাচ্ছে না। এটা আমাদের জন্য সত্যিই খুব দুঃখের বিষয়। আমি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যখন যেখানে সুযোগ পাচ্ছি, এই যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি। এই হত্যাকাণ্ড বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি।' তিনি বলেন, 'আমাদের দুর্ভাগ্য, আমাদের দেশেও আমরা দেখি কিছু মানুষ; তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য অগ্নি সংযোগ করে মানুষকে হত্যা করে। রেল লাইনের ফিসপ্লেট খুলে দেয়, কেন? রেলের বগিগুলো পড়ে যাবে আর মানুষ নিহত হবে। এটা কোন ধরনের রাজনীতি আমি জানি না। আমার কাছে অবাক লাগে। 'জীবন্ত মানুষগুলোকে পুড়িয়ে মারা, বাসে আগুন, গাড়িতে আগুন, আগুন দিয়ে খেলা। এটা কেন? রাজনীতি হবে আদর্শ নিয়ে, নিজের যদি কর্মসূচি থাকে জনগণের কাছে যাবে। জনগণের কাছে বলবে। কয়েকদিন আগে ট্রেনে আগুন দিয়েছে। একটি মা তার সন্তানকে বুকে ধরে পুড়ে মারা গেছে। এই ধরনের করুণ দৃশ্য তো আমরা দেখতে চাই না। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য মানুষকে পুড়িয়ে মেরে, মানুষের ক্ষতি করে কী অর্জন করছে সেটাই আমার প্রশ্ন। এই ধরনের সংঘাত বন্ধ হোক, সেটাই আমরা চাই,' যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'মানুষের কাছে যেতে হবে মানুষের কল্যাণের কথা বলে। মানুষের উন্নয়নের কথা বলে। মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারব সেই কথা বলে কিন্তু মানুষ পুড়িয়ে নির্বাচন বন্ধ করে ফায়দা লুটবে এটা বাংলার মাটিতে চলবে না। আমি ধিক্কার জানাই তাদের, যারা এই ধরনের হুকুম দেয় এবং যারা এই ধরনের কাণ্ড ঘটায়। 'আরেকটা কথা আমি বলবো, এভাবে জীবন্ত মানুষ পোড়ানো, এটা তো মহাপাপ। এটা তো অন্যায়। এই অন্যায় কক্ষনো মেনে নেওয়া যায় না,' বলেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষের কাছে যেতে হবে মানুষের কল্যাণের কথা বলে। মানুষের উন্নয়নের কথা বলে। মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারব সেই কথা বলে কিন্তু মানুষ পুড়িয়ে নির্বাচন বন্ধ করে ফায়দা লুটবে এটা বাংলার মাটিতে চলবে না।
বিএনপির সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ আজ
নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আজ রোববার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা অবরোধের ডাক দিয়েছে বিএনপি। আজ ভোর ৬টায় অবরোধ শুরু হয়ে শেষ হবে সন্ধ্যা ৬টায়। গত ১২ ডিসেম্বর সকাল থেকে ৩৬ ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচির পর বিএনপি আর কোনো অবরোধ দেয়নি। তবে এর মধ্যে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় র‍্যালি ও ১৯ ডিসেম্বর হরতাল পালন করে দলটি। গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে এই অবরোধ দলটির দ্বাদশ দফা অবরোধ কর্মসূচি ও ২০ ডিসেম্বর সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলন ঘোষণার পর প্রথম দফা। গত ২০ ডিসেম্বর ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। সেদিনই তিনি আজকের অবরোধের ঘোষণা দেন। জরুরি সেবায় ব্যবহৃত যানবাহন অবরোধের আওতার বাইরে থাকবে। ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অনেক জ্যেষ্ঠ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এরপর থেকে ১১ দফায় ২২ দিন দেশব্যাপী অবরোধ ও চার দফায় পাঁচ দিন হরতাল দেয় বিএনপি।
নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আজ রোববার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা অবরোধের ডাক দিয়েছে বিএনপি। আজ ভোর ৬টায় অবরোধ শুরু হয়ে শেষ হবে সন্ধ্যা ৬টায়।
আশুলিয়ায় যুবদলের মশাল মিছিল
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সরকারের পদত্যাগ দাবিতে ঢাকার আশুলিয়ায় মশাল মিছিল করেছে ঢাকা জেলা যুবদল। শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় এ মশাল মিছিল হয়। মিছিলটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। এতে নেতৃত্ব দেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব খান। মশাল মিছিলে সাভার থানা, সাভার পৌর ও আশুলিয়া থানা যুবদলের শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন। যোগাযোগ করা হলে আশুলিয়া থানা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরকার পতনের একদফা দাবি, ডামি নির্বাচন বর্জন ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আমরা মশাল মিছিল করেছি।'
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সরকারের পদত্যাগ দাবিতে ঢাকার আশুলিয়ায় মশাল মিছিল করেছে ঢাকা জেলা যুবদল।
কলাবাগান বাসস্ট্যান্ডে চলন্ত বাসে দুর্বৃত্তের আগুন
রাজধানীর কলাবাগানে মিরপুর রোডে একটি চলন্ত বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার রাত ১০টা ৫০ মিনিটে কলাবাগান বাসস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে। ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ আলম দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, 'দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলে করে এসে মেট্রোলিংকের বাসটিতে আগুন দেয়। এ সময় স্থানীয়রা ধাওয়া দিলে, তারা মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যায়।' মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে, এ ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ফায়ার সার্ভিস জানায়, খবর পেয়ে মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশনের ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। এর আগে, রাত সোয়া ৯টার দিকে গুলিস্তানে এবং সাড়ে ১০টার দিকে মিরপুর-১৩ এলাকায় আরও দুটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
রাজধানীর কলাবাগানে মিরপুর রোডে একটি চলন্ত বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
বিএনপির লিফলেট নেওয়া ব্যবসায়ীকে আটক করে থানায় নিলো পুলিশ
মানিকগঞ্জে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিতরণ করা লিফলেট নেওয়ার পর এক ব্যবসায়ীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এর প্রতিবাদে প্রায় এক ঘণ্টা দোকানপাট বন্ধ রাখেন ব্যবসায়ীরা। পরে ওই ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। আজ শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা শহরের শহীদ রফিক সড়কের ডলি প্লাজা মার্কেটে এই ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, বিএনপির নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনিবার মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট বিতরণ করেন জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ডলি প্লাজার পোশাক ব্যবসায়ী মশিউর রহমান সুমনকে লিফলেট দেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। লিফলেট বিতরণের ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করেন নেতাকর্মীরা। পরে দুপুর সোয়া ১টার দিকে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিল হোসেনসহ ৬-৭ জন পুলিশ সদস্য ডলি প্লাজায় গিয়ে ব্যবসায়ী মশিউর রহমান সুমনকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। এ ঘটনার প্রতিবাদে দেড়টার দিকে দোকান বন্ধ করে দেন পোশাক ব্যবসায়ীরা। এরপর তারা সদর থানায় যান। ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদের মুখে দুপুর আড়াইটার দিকে পুলিশ সুমনকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় মানিকগঞ্জ তৈরি পোশাক দোকান মালিক সমিতির সভাপতি খোন্দকার মিরাজুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি কিছু বলতে রাজি হননি। দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না।' বিকেল ৩টার দিকে সরেজমিনে মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, মশিউর রহমানের 'বিথী ফ্যাশন' দোকানটি বন্ধ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী ডেইলি স্টারকে বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের দেওয়া লিফলেট নেওয়া এবং নেতাকর্মীরা তা ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় ব্যবসায়ী মশিউরকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। যোগাযোগ করা হলে ভুক্তভোগী মশিউর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হঠাৎ বিএনপির কয়েকজন কর্মী এসে ব্যবসায়ীদের লিফলেট দেয়। আমাকে লিফলেট দেওয়ার সময় মোবাইলে ভিডিও করেন। পরে পুলিশ এসে আমাকে থানায় নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ আমাকে ছেড়ে দেয়।' জানতে চাইলে ওসি মো. হাবিল হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'একটি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই ব্যবসায়ীকে থানায় নেওয়া হয়েছিল। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।' বিএনপির নেতাকর্মীদের লিফলেট নেওয়ায় তাকে আটক করা হয়েছিল কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি হাবিল হোসেন বলেন, 'লিফলেটের বিষয়ে নয়, অন্য একটি বিষয়ে তাকে থানায় নেওয়া হয়েছিল।'
মানিকগঞ্জে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিতরণ করা লিফলেট নেওয়ার পর এক ব্যবসায়ীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এর প্রতিবাদে প্রায় এক ঘণ্টা দোকানপাট বন্ধ রাখেন ব্যবসায়ীরা। পরে ওই ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
মিরপুরে ট্রাস্ট পরিবহনের বাসে আগুন
রাজধানীর মিরপুরে ট্রাস্ট পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মিরপুর-১৩ নম্বরে সড়কের পাশে পার্কিং করা বাসটিতে আগুন দেওয়া হয়। কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুকুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, 'মিরপুর-১৩ এলাকায় কৃষি ব্যাংকের সামনের সড়কে পার্কিং করা ট্রাস্ট পরিবহনের বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তবে, এতে কেউ হতাহত হয়নি।' এ ঘটনায় এখনো কাউকে পুলিশ আটক করতে পারেনি বলে জানান তিনি। ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের ডিউটি অফিসার আহসান হাবিব ডেইলি স্টারকে জানান, খবর পেয়ে মিরপুর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগে রাত সোয়া ৯টার দিকে গুলিস্তানে রজনীগন্ধা পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
রাজধানীর মিরপুরে ট্রাস্ট পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন জাতির স্বার্থে আমাকে তার প্রয়োজন: শাহজাহান ওমর
ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান ওমর বলেছেন, 'প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে জাতির স্বার্থে আমাকে তার প্রয়োজন।' আজ শনিবার বিকেলে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার গালুয়া ইউনিয়নের কানুদাসকাঠী গ্রামে বর্তমান সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুনের বাড়ির প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক পথসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। সভায় উপস্থিত জনতার উদ্দেশে শাহজাহান ওমর বলেন, '২০১৪ সালে আমি কি নির্বাচন করছি? ২০০৯ সালে কি আমি নির্বাচন করছি? ২০১৮ সালে পুলিশ-মিলিটারি ব্যারিকেড দিয়ে রাখছে। আমি নির্বাচনই করতে পারি নাই।' তিনি বলেন, 'আমি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায়, হারুন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।' এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, 'আমি ৩০ নভেম্বর (মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন) সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত জানতাম না যে আমাকে নির্বাচন করতে হবে। হঠাৎ করে ফোন পেলাম গণভবন থেকে, প্রধানমন্ত্রী আমাকে সালাম জানাইছেন। সকাল ১১টা বাজে তখন। স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলাম কী করব। উনি বললেন, প্রধানমন্ত্রী ডেকেছেন, রাজদর্শন। যাও দেখা করো।' 'উনি (প্রধানমন্ত্রী) বললেন, আপনি অন্য দল থেকে এমপি হয়েছেন। এবার আমার দল করা যায় না? আমি বললাম যায়। উনি বললেন যে তাহলে আমার দল থেকে ইলেকশন করেন। আমি বললাম, হারুন সাহেব তো ভালো লোক। উনি রিলিফ বিক্রি করেন না, চাকরি দিয়ে টাকা নেন না। এই লোকটাকে কেন নেত্রী রাখবেন না। উনি বললেন যে জাতির স্বার্থে আপনাকে আমার প্রয়োজন,' বলেন তিনি। 'আমি বললাম, নেত্রী আপনি আমাকে ইলেকশন করতে বলেছেন, আমার একটা শর্ত আছে। বললাম, আপনার তিন ভাই ১৫ আগস্ট শহীদ হয়েছেন। আপনি যদি আমাকে চতুর্থ ভাই হিসেবে গ্রহণ করেন, তাহলে আপনাকে আমি কী সার্ভিস দিতে পারি, আপনি দেখবেন। উনি আমাকে গ্রহণ করলেন। তখন আমাকে দস্তখত করতে বললেন, যোগ করেন শাহজাহান ওমর। তিনি বলেন, 'এরপর সাড়ে ১১টায় ঢাকা থেকে রওনা দিলাম। সাড়ে ৩টায় এলাকায় গিয়ে হলফনামা জমা দিলাম। কারও সঙ্গে আলাপ করার সুযোগ আমার ছিল না। নেত্রী অনেক জ্ঞানী। আমি হারুন সাহেবের বাড়া ভাত কেড়ে নিতে আসিনি। আমি হারুন ভাইকে বলেছি, উনার কোনো কাজে আমি বাধা হতে চাই না।' ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। নাশকতা মামলায় গত ২৯ নভেম্বর জামিন পান তিনি। এরপর আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়নপত্র তোলেন। পরে বিএনপি থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। পথসভায় শাহজাহান ওমর আরও বলেন, 'আমাকে বিভাজন করলে কোনো লাভ হবে না। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমার সম্পর্ক অনেক পুরোনো। বর্তমান সংসদ সদস্য হারুনের সঙ্গে আমার পারিবারিক সম্পর্ক।' বক্তব্যে তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, '৭ জানুয়ারি ভোটকেন্দ্রে ৭০ ভাগ ভোটার উপস্থিত করতে হবে।' বিদেশিদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে আজকে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। তারা কেউ বলে বাংলাদেশের নির্বাচন কম্পিটেটিভ হবে না। তাই ৭০ ভাগ ভোটার উপস্থিত করাতে হবে।' বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক নেতা শাহজাহান ওমর দাবি করেন, 'আমেরিকা চেয়েছিল চট্টগ্রামে এয়ারফোর্সের জন্য একটি বেইজ করতে, যেখান থেকে তারা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আঘাত হানতে পারে। শেখ হাসিনা তাদের প্রস্তাবে রাজি হলে, তিনি আমৃত্যু প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা হতে দেন নাই।'
ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান ওমর বলেছেন, 'প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে জাতির স্বার্থে আমাকে তার প্রয়োজন।'
লিফলেট বিতরণকালে সিলেট বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও যুবদল সভাপতি গ্রেপ্তার
সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী ও জেলা যুবদল সভাপতি মুমিনুল ইসলাম মুমিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ডামি নির্বাচন বন্ধ ও অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে আজ শনিবার বিকেলে সিলেট নগরীর বন্দরবাজার এলাকায় লিফলেট বিতরণকালে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করে জানান, তাদের বিরুদ্ধে আগের মামলা ছিল। সিলেট জেলা বিএনপি সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ডামি নির্বাসন বন্ধ ও অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরের উপস্থিতিতে আমরা লাল দিঘীরপাড় ও বন্দরবাজার এলাকায় লিফলেট বিতরণ করছিলাম। এ সময় সাদা পোশাকের পুলিশ আমাদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়।' তিনি বলেন, 'ঘটনাস্থল থেকে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুবদলের সভাপতিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এভাবে একটি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক প্রচারাভিযানে পুলিশের হামলা ও গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।'
সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী ও জেলা যুবদল সভাপতি মুমিনুল ইসলাম মুমিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা-বৈঠক বসছে দিল্লিতে: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অতীতের তিনটি ভুয়া নির্বাচনের মতোই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিল্লির প্রকাশ্য প্রভাবে বাংলাদেশের জনগণ উদ্বিগ্ন। আজ শুক্রবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা-বৈঠক বসছে দিল্লিতে। বাংলাদেশের নাগরিকদের ভাগ্য নির্ধারণের সুযোগ বাংলাদেশের নাগরিকদের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ারই অংশ। যা বাংলাদেশের জন্য সম্মানজনক নয়।' ভারতীয় কূটনীতিকরা বাংলাদেশে এসে প্রকাশ্যে শেখ হাসিনার একতরফা ডামি নির্বাচনের পক্ষে বক্তব্য রাখছেন বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।   তিনি বলেন, 'বিএনপিসহ অধিকাংশ দলবিহীন নির্বাচনে তারা সমর্থন দিচ্ছেন। দিল্লি থেকে বলা হচ্ছে, তারা বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা চান। তার মানে গণতন্ত্র তাদের কাছে এখন অপাংক্তেয়। ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মতো দেশটির গণমাধ্যমে বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিকরা যেসব মতামত প্রকাশ করছেন, তা প্রায় সবই তাদের সরকারি দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতির পুনরাবৃত্তি ছাড়া কিছু নয়।' রিজভী বলেন, 'সেখানকার পত্রিকায় লেখা হচ্ছে "মোদির কৌশলে বাজিমাত করতে সক্রিয় শেখ হাসিনা"। আরও বিস্ময়ের কথা হচ্ছে, তারা গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি বহুমত ও সহনশীলতার নীতিকে অগ্রাহ্য করে প্রতিবেশী দেশের স্থিতিশীলতা, অন্য কথায় বর্তমান সরকারের ক্ষমতায় টিকে থাকাকে অপরিহার্য গণ্য করছেন গণতন্ত্রকে বর্জন করে। এ ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতার বাংলা হলো স্বৈরতন্ত্র।' তিনি বলেন, 'তাদের কথায় স্পষ্ট যে, এখানে তারা কি লেন্দুপ দর্জি চান? দিল্লি তার নিজ স্বার্থের জন্য আমাদের দেশের গণতন্ত্র হত্যায় মুল ভূমিকা পালন করে আমাদের দেশের মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে? জনগণের প্রশ্ন দিল্লি কি বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্কের পরিবর্তে একটি গণবিরোধী ভোট ডাকাত দলের সঙ্গে সম্পর্ক চায়?' 'তবে দেশের ১৮ কোটি জনগণ চায় দিল্লি সৎ প্রতিবেশী সুলভ আচরণ করুক। আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলাক। জনগণের ভোটাধিকার গলা টিপে হত্যার পক্ষে অবস্থান পরিবর্তন করুক', বলেন তিনি। রিজভী বলেন, 'শেখ হাসিনা তার পূর্বনির্ধারিত ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকতে গণতান্ত্রিক বিশ্বকে বিভ্রান্ত করার কৌশল হিসেবে নাশকতা ও জঙ্গি নাটক মঞ্চস্থ করার পরিকল্পনা নিচ্ছেন বলে জানা যাচ্ছে। আমরা জানতে পেরেছি, একজন ডিআইজিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জঙ্গি নাটক মঞ্চস্থ করার। এজন্য বিএনপি-জামায়াতের কয়েকজনকে তুলে নিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের দিয়ে জঙ্গি নাটক মঞ্চায়ন হতে পারে।' তিনি বলেন, 'পার্শ্ববর্তী দেশের পরিকল্পনায় ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের পূর্ববর্তী সময়েই তারা জঙ্গি নাটক করে তাদের স্বার্থসিদ্ধি করেছিল। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগ মুহূর্তেও একই নীলনকশা বাস্তবায়ন করতে পারে।' 'আমি পশ্চিমা গণতান্ত্রিক বিশ্বকে বলছি, আপনারা আওয়ামী লীগের কোনো নাটককে বিশ্বাস করবেন না। একতরফা সাজানো ডামি নির্বাচন নিয়ে সোচ্চার হোন এবং এ দেশের জনগণের একান্ত চাওয়া গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসুন', বলেন তিনি। রিজভী বলেন, 'মেরুদণ্ডহীন দলদাস নির্বাচন কমিশন শেখ হাসিনার পাঠানো সিট বণ্টনের তালিকায় সিলমোহর দেওয়ার জন্য একটি একতরফা নির্বাচনের নাটকের আয়োজন করেছে। এই নির্বাচন ঘিরে নির্বাচন কমিশনারদের কথাবার্তা-আচার-আচরণ রীতিমত হাস্যকর। গণভবনের সুতোয় পুতুলের মতো নাচছে ইসি। তারা প্রায়শই বিএনপিকেও হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।' তিনি বলেন, 'গোটা দেশের জনগণ জানে, কারা কারা এমপি হবেন, সেই তালিকা হয়ে গেছে। আর নির্বাচন কমিশনাররাও ভেক ধরছেন। নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান আজ বলেছেন, "রুহুল কবির রিজভীর কাছে যদি তালিকা থাকে প্রকাশ করতে বলেন"। কী হাস্যকর কথা। তিনি সাধু-সন্ত হওয়ার অভিনয় করছেন। তিনি গণভবনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য মুখিয়ে আছেন আর তিনি জানেন না? এতো অর্বাচীনতার নাটক করে ভাবছেন জনগণ কিছু বোঝে না? তালিকা আমি কেন দেবো? শেখ হাসিনাকে বলেন, পেয়ে যাবেন। আপনার প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বলেন, পেয়ে যাবেন।' রিজভী বলেন, 'আপনাদের নেতা ওবায়দুল কাদের আগেই ঘোষণা করেছেন, "১৮৯৬ জন প্রার্থী এবারের নির্বাচনের ফাইনাল খেলায় অংশ নিচ্ছে। ৭০ শতাংশ মানুষ ভোট দেবে"। ওবায়দুল কাদের জানেন কত পার্সেন্ট ভোট কাস্ট করবে, তা-ও তারা গণভবনে বসে ঠিক করে রেখেছেন। আপনাদের কাজ হলো ঘোষণা করা। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের মতোই আরেকটি পূর্ব নির্ধারিত ফলাফল ঘোষণার এসব নাটক বাদ দিয়ে পদত্যাগ করে জনগণের কাতারে আসুন। অন্যথায় মীরজাফরদের পরিণতি কী হয় তা ইতিহাসে পড়ে নিন।'
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অতীতের তিনটি ভুয়া নির্বাচনের মতোই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিল্লির প্রকাশ্য প্রভাবে বাংলাদেশের জনগণ উদ্বিগ্ন।
‘আমি আর ডামি’র নির্বাচন দেশকে সংকটের দিকে নিয়ে যাবে: রুহিন হোসেন প্রিন্স
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, 'সরকার একতরফাভাবে আগামী ৭ জানুয়ারি যে পাতানো "আমি আর ডামি" নির্বাচনের আয়োজন করেছে তা দেশকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক সংকটের দিকে নিয়ে যাবে।' আজ শুক্রবার দেশব্যাপী প্রতিবাদ বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। প্রিন্স বলেন, 'দেশকে ভয়ংকর পরিণতির হাত থেকে বাঁচাতে অবিলম্বে সংসদ ভেঙে দিয়ে সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনী তফসিলে নির্বাচন দিতে হবে। রাজনৈতিক ঐক্যমত্ত হলো এখনো তা সম্ভব।' আগামী ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ না নেওয়া দলগুলোর সভা-সমাবেশের ওপর 'সংবিধানবিরোধী' নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে প্রিন্স বলেন, 'দেশে জরুরি অবস্থা ছাড়া এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা সংবিধানবিরোধী। এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার অধিকার নির্বাচন কমিশনের বা কোনো সংস্থারই নেই। দেশবাসী এই গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে।' সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাম জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ। বক্তব্য রাখেন রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ মার্ক্সবাদীর নেতা ডা. জয়দীপ ভট্টাচার্য, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী। সমাবেশ পরিচালনা করেন বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলাম। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভোট চাওয়ার যেমন অধিকার আছে, তেমনি ভোটে না যাওয়ার, ভোট বয়কট করার এবং জনগণকে ভোট বর্জনের আহ্বান জানানোর অধিকারও রাজনৈতিক দলগুলোর রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সেই অধিকার খর্ব করেছে। তারা বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের আগে-পরে মোট ১৩ দিন মাঠে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু জরুরি অবস্থা ঘোষণা ছাড়া এত দীর্ঘ সময় সেনাবাহিনীকে মাঠে রাখা যায় না। একটি সরকারের অধীনে নির্বাচনকালীন সময়েতো নয়ই। সরকার বেনামে জরুরি অবস্থা জারি রেখে জনগণের মতামতকে তোয়াক্কা না করে আবার যেকোনো ভাবে ক্ষমতায় যেতে চায়। সমাবেশে নেতারা বলেন, একতরফা নির্বাচন করলে দেশে যে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে তা সামাল দেওয়ার ক্ষমতা সরকারের নেই। তাদের ভাষ্য, নির্বাচন গ্রহণযোগ্য দেখানোর জন্য সরকার দলীয় প্রার্থীর বাইরেও নিজ দলের 'স্বতন্ত্র প্রার্থী, ডামি প্রার্থী, উচ্ছিষ্টভোজী সুবিধাভোগীদের প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছে'। এসব প্রার্থীরা আজ নিজেরা নিজেরাই মারামারি, খুনাখুনি, হানাহানিতে লিপ্ত হয়েছে। সরকারদলীয় প্রার্থীসহ বিভিন্ন প্রার্থী মানুষকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে যে ভোট দিতে না গেলে ভিজিএফ, ভিজিডি, বয়স্ক ভাতাসহ সামাজিক সুরক্ষা কার্ড বাতিল করে দেবে। তারা বলেন, এ তামাশার নির্বাচন বাংলার মানুষ মেনে নেবে না এবং তারা রুখে দাঁড়াবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, 'সরকার একতরফাভাবে আগামী ৭ জানুয়ারি যে পাতানো "আমি আর ডামি" নির্বাচনের আয়োজন করেছে তা দেশকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক সংকটের দিকে নিয়ে যাবে।'
‘পাগলের মার্কা নৌকা’ বক্তব্য দেওয়া নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে আ. লীগ
পটুয়াখালী-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুব তালুকদারের পক্ষে নির্বাচনী পথ সভায় বক্তব্য দিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে পথ সভায় বক্তব্য দেন লতাচাপলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান আনসার উদ্দিন মোল্লা। তিনি বলেন, 'প্রত্যেক মা-বোনদের বুঝাবেন—এইবার আওয়ামী লীগের মার্কা ঈগল, আর পাগলের মার্কা হচ্ছে নৌকা।' এ সময় নৌকার সমর্থকদের হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, 'ব্যালটে হাত দিবেন না, হাত কেটে দেব।' তার এই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপকভাবে আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়। আওয়ামী লীগের পদধারী একজন নেতা নৌকা প্রতীককে ব্যঙ্গ করে কথা বলায় ক্ষোভ জানিয়েছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব হাওলাদার বলেন, 'পাগলের মার্কা নৌকা নয়, নৌকা বঙ্গবন্ধু মার্কা, নৌকা শেখ হাসিনার মার্কা। তবে যে নৌকাকে পাগলের মার্কা বলেছেন সে নিজেও পাগল আর তার ঈগল মার্কার প্রার্থীও পাগল।' 'পাগল না হলে কেউ এমন মন্তব্য করতে পারে না। এ ব্যাপারে আমরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিব,' বলেন তিনি। জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর বলেন, 'আনসার মোল্লা নিজে নৌকা নিয়ে নির্বাচন করে চেয়ারম্যান হয়েছেন। নৌকা পাগলের মার্কা হলে তিনি নৌকা নিয়ে নির্বাচন করলেন কেন? তার এই বক্তব্য দলের সংগঠন বিরোধী, দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থি। আমরা এ বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিব।' এ বিষয়ে জানতে আনছার উদ্দিনের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি। মোবাইলে এসএমএস পাঠানো হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
পটুয়াখালী-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুব তালুকদারের পক্ষে নির্বাচনী পথ সভায় বক্তব্য দিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা।
বিএনপি অসহযোগ আন্দোলনের মানে বোঝে না: দীপু মনি
বিএনপির চলমান 'অসহযোগ আন্দোলন' নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী দীপু মনি বলেছেন, বিএনপি অসহযোগ আন্দোলনের মানে বোঝে না। তাই জনগণকে তাদের সঙ্গে দেখা যায় না। আজ শুক্রবার দুপুরে চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহ মুহাম্মদপুর ইউনিয়নে গণসংযোগকালে এ কথা বলেন ক্ষমতাসীন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ সময় আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী আরও বলেন, 'বিএনপি কার বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলন করছে? কাকে নিয়ে করছে? অসহযোগ মানে তো নাশকতা নয়। অসহযোগ মানে কি ট্রেনে-বাসে নারী-শিশু পুড়িয়ে হত্যা করা? যারা এই সমস্ত নাশকতা করে, তারা অসহযোগ মানে বোঝে না। অসহযোগ করার সুযোগও নেই তাদের।' সরকারের পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারে অধীনে নির্বাচন এবং তফসিল বাতিলের দাবিতে গত ২৯ অক্টোবর থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএনপিসহ সমমনা জোট ও দলগুলো চার দফায় পাঁচ দিন হরতাল এবং এগারো দফায় ২২ দিন অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। পরে গত ২০ ডিসেম্বর বুধবার সরকারের বিরুদ্ধে 'সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনে'র ডাক দেয় বিএনপি। এই আন্দোলনে অংশ নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচনী দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। সরকারকে কর, খাজনা এবং বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানির বিল পরিশোধ বন্ধ করে দেওয়া এবং ব্যাংকে আমানত না রাখার আহ্বানও জানানো হয়েছে। মামলার আসামি দলীয় নেতাকর্মীদেরকে আদালতে হাজিরা না দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারে নেমে আজ শাহ মুহাম্মদপুর ইউনিয়নের নারী ও পুরুষ ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন দীপু মনি। এসময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে ছিলেন। দীপু মনি ২০০৮ সালে প্রথম চাঁদপুর–৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালে তাকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর তাকে শিক্ষামন্ত্রী করা হয়।
বিএনপির চলমান 'অসহযোগ আন্দোলন' নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী দীপু মনি বলেছেন, বিএনপি অসহযোগ আন্দোলনের মানে বোঝে না। তাই জনগণকে তাদের সঙ্গে দেখা যায় না।
৪৪ দিনে বিএনপি-জামায়াতের ১২৩১ নেতাকর্মীর কারাদণ্ড
রাজধানীতে রাজনৈতিক সহিংসতার অভিযোগে ২০১০, ২০১৩ ও ২০১৮ সালের পাঁচটি মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার বিএনপি-জামায়াত ও তাদের সহযোগী সংগঠনের আরও ১৩৫ নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ নিয়ে ২০১০ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দায়ের হওয়া ৬৯টি মামলায় চলতি বছরের ৭ নভেম্বর থেকে অন্তত ১ হাজার ২৩১ জন বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠানো হলো। বিনা অনুমতিতে রাস্তায় জমায়েত, নাশকতা, সম্পদের ক্ষতি করা, যানবাহনে আগুন দেওয়া ও ভাঙচুর এবং পুলিশের ওপর হামলা ও পুলিশকে দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলাগুলো দায়ের করা হয়। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে তুরাগ থানায় করা একটি নাশকতার মামলায় বিএনপির ৯৩ নেতাকর্মীকে দুই ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শেখ সাদী এ কারাদণ্ড দেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে কোনো আসামি উপস্থিত ছিলেন না। বিচার চলাকালে রাষ্ট্রপক্ষের ৮ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন—বিএনপির তুরাগ শাখার সভাপতি আতিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তফা, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সালাম, উত্তরা পশ্চিম শাখার সভাপতি কুদরত-ই-এলাহী লিটন ও জামায়াতের তুরাগ শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. মোজাম্মেল। মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তুরাগের ধউর এলাকার কাছে বিএনপি-জামায়াতের একদল নেতাকর্মী অবৈধভাবে জড়ো হয়। এরপর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে তারা গাড়ি ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়ে, দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়। এ ঘটনায় তুরাগ থানায় মামলা করেন উপ-পরিদর্শক মো. বুরজাহান। গতকাল ঢাকার আরেকটি আদালত ২০১৩ সালের নভেম্বরে বংশাল এলাকায় রাজনৈতিক সহিংসতার দায়ে ১৫ বিএনপি নেতাকর্মীকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়। এ মামলাটির রায় ঘোষণা করেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিন। রায় দেওয়ার সময় দুই আসামি আদালতে ছিলেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার চার্জশিটভুক্ত বাকি ৪৭ আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে। মামলার বিচার চলাকালে মোট ১৬ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ মোহন ও যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক আলী সরকার রয়েছেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বর বংশালের নবাব ইউসুফ সুপার মার্কেটের সামনে একদল বিএনপি নেতাকর্মী জড়ো হন। তারা ককটেল বিস্ফোরণ, একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, পুলিশের ওপর হামলা ও পুলিশকে দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়। এ ঘটনায় বংশাল থানায় একটি মামলা করে পুলিশ। এছাড়া ২০১৮ সালের নভেম্বরে সূত্রাপুরে রাজনৈতিক সহিংসতার দায়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জসিম ৮ বিএনপি কর্মীকে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দেন। মামলার বিচার চলাকালে মোট ৬ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর পুরান ঢাকার সূত্রাপুরে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনের রাস্তায় বিনা অনুমতিতে রাস্তায় জড়ো হয় বিএনপির একদল নেতাকর্মী। পরে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়। এ ঘটনায় এসআই মো. হাফিজুল্লাহ বাদী হয়ে সূত্রাপুর থানায় মামলা করেন। রাজপথে বিনা অনুমতিতে জড়ো হওয়া এবং পুলিশকে দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ২০১০ সালের ১৩ নভেম্বর হাজারীবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় গতকাল ঢাকার আরেকটি আদালত ছয় বিএনপি নেতাকর্মীকে দেড় বছরের কারাদণ্ড দেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ুন কবির এ রায় দেন। মামলাটিতে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চার্জশিটভুক্ত বাকি ৫১ জন আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ৫ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন। এছাড়াও গতকাল, ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার জন্য অক্টোবর ২০১৮ সালে রামপুরা থানায় দায়ের করা একটি মামলায় ১৩ জামায়াত কর্মীকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের চারজন সাক্ষী আদালতে জবানবন্দি দেন।
রাজধানীতে রাজনৈতিক সহিংসতার অভিযোগে ২০১০, ২০১৩ ও ২০১৮ সালের পাঁচটি মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার বিএনপি-জামায়াত ও তাদের সহযোগী সংগঠনের আরও ১৩৫ নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।