title
stringlengths
10
148
text
stringlengths
14
34.6k
summary
stringlengths
1
7.08k
মাহফুজ আনামের অভিমত: দ্য ডেইলি স্টারের জন্য ‘ইন্টারেস্টিং’ দিন
টেলিভিশনের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন গতকাল দ্য ডেইলি স্টার সম্পর্কে কিছু মন্তব্য করেছেন, যার একটি ভিত্তিহীন এবং অপরটি বাস্তবতাবিবর্জিত। একজন সাংবাদিক উল্লেখ করেন, 'মাহফুজ আনাম সাহেব বলেছেন, নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে'—এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'এখন মাহফুজ আনাম সাহেব যেটা বলছেন, উনি সাংবাদিক। উনি বিএনপির আন্দোলন সফল হোক এবং এ ব্যাপারে তার পত্রিকাও উৎসাহিত করেছে। এখন যেভাবে তারা ভেবেছিলেন, উৎসাহ দিয়েছিলেন, বাস্তবে সেটা হয়নি। এ দুঃখবোধ তো থাকতেই পারে।' তার এ বক্তব্যে যে তিনি কটাক্ষ করেছেন তা যেমন স্পষ্ট, আবার তার মন্তব্যটি পুরোপুরি ভিত্তিহীনও। বেশ কিছুদিন আগে লিখেছিলাম, ক্ষমতার কাছে, 'মুক্ত গণমাধ্যম মানে এখন উন্মুক্ত প্রশংসা।' সেখানে লিখেছিলাম, 'উন্মুক্ত প্রশংসা হলো সেটাই যেখানে গণমাধ্যম শুধু খোলামেলা প্রশংসার ক্ষেত্রে পুরোপুরি স্বাধীন থাকবে। যে গণমাধ্যম যতবেশি প্রশংসা করতে পারবে, সেটিকে তত মুক্ত বলে ধরা হবে। এর বাইরে যেকোনো ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি হলো ভুয়া খবর, ষড়যন্ত্র, দেশবিরোধী, উন্নয়নবিরোধী এবং কিছু ক্ষেত্রে রাষ্ট্রদ্রোহিতা।' গত তিন মাসে আমাদের বেশিরভাগ প্রতিবেদন ছিল ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে। কিন্তু এসব প্রতিবেদনে প্রশংসার কিছু ছিল না বলে সেগুলো ভালো প্রতিবেদন হয়নি। আমরা সরকারের সবগুলো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এবং বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্পগুলোকে ব্যাপক কাভারেজ দিলেও, আমাদের দোষ হলো, আমরা বিপরীত চিত্রগুলোও তুলে ধরি। ব্রিটেনের রাজনীতি নিয়ে বিখ্যাত ব্যঙ্গধর্মী টেলিভিশন সিরিজে যেমন বলা হতো, 'কোনো ভিন্ন দৃষ্টিকোণ, সমালোচনা ও ভিন্নমত থাকবে না, থাকবে শুধু "ইয়েস মিনিস্টার"।' ওবায়দুল কাদের সাহেব আমাদের সেই কথাই আবার প্রমাণ করলেন। দ্বিতীয় মন্তব্যটি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। জাতিসংঘ মহাসচিবের শেফ দ্য ক্যাবিনেটের কাছে তার পাঠানো 'ব্যক্তিগত চিঠি'র বিষয়বস্তু প্রকাশ করায় তিনি ডেইলি স্টারের সমালোচনা করেছেন। টেলিভিশনের প্রতিবেদককে তিনি বলেছেন, 'আমি যদি আপনাকে রাতের খাবারের আমন্ত্রণ জানাই বা আপনি ও আপনার পরিবারের সবাই কেমন আছে জানতে চেয়ে চিঠি লিখি, তবে সেটি কি সংবাদ হিসেবে প্রকাশ করা উচিত? এটি কী ধরনের সাংবাদিকতা?' তিনি বলেন, 'জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যখন ছিলাম, তখনকার কিছু ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং "ধন্যবাদ" দিয়ে চিঠি লিখেছি।' যদিও, জাতিসংঘের সঙ্গে সদস্য রাষ্ট্রগুলো চিঠিতে যেভাবে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ করে,পররাষ্ট্রমন্ত্রীর লেখা ৭০০'র বেশি শব্দের চিঠিটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেভাবেই লেখা হয়েছে। শুরুর অভিবাদন ও উপসংহার ছাড়া চিঠিতে পাঁচটি অনুচ্ছেদ আছে, যার মধ্যে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক, প্রধানমন্ত্রীর সফর, জাতিসংঘের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি, বিভিন্ন প্রকল্প ও পরিকল্পনা যেমন 'প্যাক্ট অব ফিউচার', 'নিউ এজেন্ডা ফর পিস', রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানে আমাদের ভূমিকা, উন্নয়ন ইত্যাদি নিয়ে লেখা হয়েছে। যে অনুচ্ছেদের কারণে আমরা চিঠিটি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করতে আগ্রহী হয়েছি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যও নিয়েছি, সেটি উদ্ধৃত করলে দাঁড়ায়, 'বাংলাদেশ জাতিসংঘের একটি উদ্যমী ও সহযোগিতামূলক মনোভাবসম্পন্ন সদস্য রাষ্ট্র। আমরা প্রবলভাবে আশাবাদী যে, জাতিসংঘ বাংলাদেশের রাজনৈতিক অগ্রগতি ও জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সহযোগিতা ও সহায়তা অব্যাহত রাখবে...তা স্বত্বেও আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশ বিভিন্ন মহলের কাছ থেকে "অযাচিত, অযৌক্তিক ও আরোপিত রাজনৈতিক চাপের" মুখোমুখি হচ্ছে। আমরা আশা করব জাতিসংঘ ও তার সেক্রেটারিয়েট, সংস্থা ও স্থানীয় কার্যালয়গুলো বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে যেতে গঠনমূলক ও সহযোগিতামূলক ভূমিকা পালন করবে।' আমাদের দেশের আন্তর্জাতিক অবস্থানের বিষয়ে আগ্রহী পাঠক, বিশেষজ্ঞ, সাবেক কূটনীতিকসহ সবার জন্য আমরা চিঠির বিষয়বস্তু প্রকাশ করেছি, যেন চিঠিটির তাৎপর্য এবং প্রকৃতপক্ষে এটি দেশের মর্যাদা কতটা বাড়িয়েছে, তারা তা বিচার করতে পারেন। একদিকে আমাদের মানবাধিকার ও স্বাধীনতা নিয়ে কথা বললে আমরা জাতিসংঘের সমালোচনা করি, আবার অন্যদিকে আমাদের নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে তাদের জড়ানোর আহ্বান জানাই। আমরা কি জানতে চাইতে পারি যে, এই চিঠির কোন অংশটি ব্যক্তিগত? পররাষ্ট্রমন্ত্রী কি চিঠির এমন একটি শব্দ দেখাতে পারবেন, যা ব্যক্তিগত বলে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে? তাহলে কেন এই ভণিতা? যদি গণমাধ্যমকে দায়িত্বহীনতার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়, তাহলে অভিযোগকারীকে অবশ্যই তথ্যভিত্তিক সত্য উপস্থাপন করতে হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী কি ভেবেছেন যে, ওই চিঠিকে 'ব্যক্তিগত' বলে দাবি করলে তিনি দায়িত্ব এড়াতে পারবেন? মাহফুজ আনাম: সম্পাদক ও প্রকাশক, দ্য ডেইলি স্টার আরওআওয়ামী লীগ হয়তো জিতবে, কতটা মূল্য দিতে হতে পারে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আরওমাহফুজ আনামের বিশ্লেষণ: সত্যি কি 'অবাধ ও সুষ্ঠু' নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি আরওমাহফুজ আনামের লেখা: ‘তলে তলে আপস হয়ে গেছে, চিন্তার কিছু নেই’ আরওরাস্তায় সংঘাত এবং অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের সম্ভাবনা আরওক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশের রাজনীতি আরওসাংবাদিকরাই কেবল সাংবাদিকতাকে বাঁচাতে পারে
টেলিভিশনের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন গতকাল দ্য ডেইলি স্টার সম্পর্কে কিছু মন্তব্য করেছেন, যার একটি ভিত্তিহীন এবং অপরটি বাস্তবতাবিবর্জিত।
প্রেসক্লাবের সামনে শুরু হয়েছে বিএনপিকর্মী ও স্বজনদের মানববন্ধন
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গুম-খুনের শিকার বিএনপি নেতাকর্মীদের স্বজনদের মানববন্ধন শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বিএনপির আয়োজনে আজ রোববার সকাল ১১টায় এ মানববন্ধন শুরু হয়। এতে উপস্থিত আছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্ত্রী রাহাত আরা বেগম, মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস, নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বিএনপি কর্মী-সমর্থকরা সরকারবিরোধী স্লোগান দেন। অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল বিএনপি নেতাকর্মীদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানানো পোস্টার, প্ল্যাকার্ড ও ছবি। অনেকের হাতে আটক, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার আত্মীয়দের ছবি দেখা যায়। এর আগে সকাল ৯টা থেকে প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকেন বিএনপি নেতাকর্মী ও পরিবারের সদস্যরা। ব্যাপক ভিড়ের কারণে ওই এলাকায় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে প্রেসক্লাব এলাকা ও এর আশেপাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আরওপ্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন: জড়ো হচ্ছেন বিএনপি কর্মী ও স্বজনেরা
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গুম-খুনের শিকার বিএনপি নেতাকর্মীদের স্বজনদের মানববন্ধন শুরু হয়েছে।
প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন: জড়ো হচ্ছেন বিএনপি কর্মী ও স্বজনেরা
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মানববন্ধনে অংশ নিতে আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হয়েছেন বিএনপি নেতাকর্মী ও পরিবারের সদস্যরা। আয়োজকদের ঘোষণা অনুযায়ী সকাল ১১টা থেকে মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা। কর্মসূচিকে সামনে রেখে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভকারীদের বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। দলীয় সমর্থকদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিএনপির পক্ষ থেকে এই মানববন্ধন আয়োজন করা হয়েছে। এসময় অংশগ্রহণকারীদের হাতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড এবং আটক, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার আত্মীয়দের ছবি বহন করতে দেখা যায়। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মজনু মৃধা বলেন, 'আমি আমার ছেলের মুক্তি চাই।' মৃধা জানান, তার ছেলে আরিফ হোসেন মিঠুকে গত ৪ নভেম্বর ডেমরা থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। এদিকে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘিরে প্রেসক্লাব এলাকায় বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। গতকাল বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গুম, হত্যা ও বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে তাদের পরিবারের সদস্যরা মানববন্ধনে অংশ নেবে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মানববন্ধনে অংশ নিতে আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হয়েছেন বিএনপি নেতাকর্মী ও পরিবারের সদস্যরা।
আওয়ামী লীগ থেকে আসন ছাড়ের দাবিতে অনড় জাতীয় পার্টি
একাদশ জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি আসন্ন নির্বাচনে অন্তত ২৩টি আসন থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দাবিতে অনড় থাকবে বলে জানা গেছে দলটির অভ্যন্তরীণ সূত্র থেকে। এই দাবি পূরণ না হলে জাতীয় পার্টি নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তও নিতে পারে বলে ব্যাপক আলোচনা চলছে দলটির ভেতরে। আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় পার্টির জন্য আসন ছাড়ের সিদ্ধান্ত দু-একদিনের মধ্যে চূড়ান্ত হতে পারে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা, বিশেষ করে দলটির শীর্ষ নেতারা নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে চিন্তিত। কেননা, আওয়ামী লীগ এখনো আসন ছাড়ের বিষয়ে তাদের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। জাতীয় পার্টির একাধিক নেতা বলেছেন, দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের মিডিয়া থেকে দূরে থাকা এবং নির্বাচন নিয়ে প্রায় এক মাস নীরব থাকা এটাই ইঙ্গিত দেয় যে তারা রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। জাতীয় পার্টির এক কো-চেয়ারম্যান দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছিলেন, গত ৬ ডিসেম্বর জাতীয় পার্টির এক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল আসন ছাড়ের বিষয়ে আলোচনা করতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে ক্ষমতাসীন দলের কাছ থেকে ৭০টি আসন চায় দলটি। তবে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি আনুষ্ঠানিকভাবে এ ধরনের আলোচনার কথা স্বীকার করেনি। গতকাল শনিবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, 'আসন ছাড় নিয়ে সমঝোতা শুধু বাংলাদেশে নয়, অন্যান্য দেশেও হয়।' তিনি আরও বলেন, 'ভারতে বিজেপি অনেক নির্বাচনী এলাকায় প্রার্থী দেয়নি। তারা জোটের অংশীদারদের জন্য সেই আসনগুলোয় কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়নি কিংবা শরিক দলগুলোর মধ্যে অনানুষ্ঠানিক বোঝাপড়া অনুসারে অন্যান্য দলের মনোনীত প্রার্থীদের সমর্থন দিয়েছে।' তার মতে, 'বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও অন্যান্য দেশে এ ধরনের বোঝাপড়া হয়।' আসন ছাড়ের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কবে হবে জানতে চাইলে চুন্নু বলেন, 'নির্বাচন বা রাজনীতিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বলে কিছু নেই। যেকোনো সময় যেকোনো সিদ্ধান্ত হতে পারে।' নির্বাচনী প্রচারণার কৌশল সম্পর্কে তিনি জানান, তারা তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বেকারত্ব দূরীকরণ, রাজধানী থেকে সেবার বিকেন্দ্রীকরণ, স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি ও শিশু অধিকার সুরক্ষার ওপর গুরুত্ব দেবে। আওয়ামী লীগ ২৯৮ আসনে ও জাতীয় পার্টি ২৮৭ আসনে মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনী ফলাফল অনুসারে, জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা কেবল ওই আসনেই জয় পেয়েছে যেখানে সমঝোতা অনুযায়ী আওয়ামী লীগ প্রার্থী দেয়নি। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার শক্তি জাতীয় পার্টির নেই। জিএম কাদেরের মুখে কুলুপ জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ নভেম্বর থেকে প্রায় একমাস ধরে দলটির প্রধান জিএম কাদের মিডিয়ার সামনে আসছেন না। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন ছাড় নিয়ে দলটি সংকটময় পরিস্থিতির মুখে আছে। এটিও জিএম কাদেরের নীরব থাকার অন্যতম কারণ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় পার্টি এক নেতা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দেশ-বিদেশের মানুষ আমাদের সমালোচনা করছে। কারণ, এক মাস আগেও আমাদের চেয়ারম্যান দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেছিলেন যে দেশে নির্বাচনের পরিবেশ নেই। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে আমরা নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অর্থাৎ, আমাদের আগের অবস্থানের ঠিক বিপরীতে অবস্থান নিয়ে ফেলেছি।' তিনি আরও বলেন, 'এমন পল্টি দেওয়ায় মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাদের নিয়ে ট্রোল করছে।' বিতর্ক এড়াতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মিডিয়াকে এড়িয়ে চলছেন এবং জনসম্মুখেও আসছেন না বলে দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে। জাতীয় পার্টির এক জ্যেষ্ঠ নেতা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দলের চেয়ারম্যান যদি আমাদের প্রার্থীদের জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত না হতে পারেন, তাহলে আমরা কেন দৌড়াবো?' 'জিএম কাদের আসলে মুখে কুলুপ এঁটে রেখেছেন, যাতে পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকলে নির্বাচনী দৌড় থেকে দলকে সরিয়ে নিতে পারেন,' বলে মন্তব্য করেন তিনি। গত ১৪ নভেম্বর ঢাকায় দলের সমাবেশে জিএম কাদের সর্বশেষ জনসমক্ষে হাজির হন। এসব বিষয়ে মন্তব্য জানতে ডেইলি স্টার জিএম কাদেরকে একাধিক কল ও মেসেজ দিলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।
একাদশ জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি আসন্ন নির্বাচনে অন্তত ২৩টি আসন থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দাবিতে অনড় থাকবে বলে জানা গেছে দলটির অভ্যন্তরীণ সূত্র থেকে।
কারাগারে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার বিএনপি নেতাকর্মীরা: রিজভী
বিএনপির বন্দী নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়ন এবং সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সন্তুষ্ট করতে বিএনপির সব বন্দীদের সব ধরনের সাধারণ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার জন্য বর্তমান আইজি প্রিজন মৌখিকভাবে সব কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।' আজ শবিবার ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে এই অভিযোগ করেন তিনি। এই বিএনপি নেতা বলেন, 'আইজি প্রিজন কারাবন্দি বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন ও অধিকার মারাত্মকভাবে লঙ্ঘিত করে সারা দেশের কারাগারগুলোকে হিটলারের গ্যাস চেম্বার ও কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পরিণত করেছেন।' তিনি বলেন, 'নির্যাতনের কারণে কারাগারে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন বিপাকে পড়েছেন।' রিজভী দাবি করেন, কারাবন্দি বিএনপির নেতাকর্মীদের কারাগারের ভেতরের কক্ষ থেকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি আত্মীয়-স্বজনদের বন্দীদের সঙ্গে দেখা করতে, তাদের জন্য জামাকাপড় দিতে এবং ফোনে কথা বলতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর কারাগারগুলো এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের দ্বারা পরিপূর্ণ হওয়ায় কারাগারগুলো এখন প্রকৃত সামাজিক অপরাধীদের জায়গা নয়। সুতরাং, তিনি সেখানে ফ্যাসিবাদের নিপীড়নের সব পদ্ধতি প্রয়োগ করছেন। জেলখানায় তিনি (শেখ হাসিনা) তার আদর্শে অনুপ্রাণিত কর্মকর্তা নিয়োগ করেছেন।' তিনি আরও বলেন, 'শেখ হাসিনা চান বিএনপি নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তারের আগে বাইরে যেমন হয়রানি, নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হন, কারাগারেও তারা তেমনি নির্যাতিত হন।' রিজভী বলেন, 'কারাগারের ভেতরে ভয়াবহ নিপীড়ন চলছে। এই নিপীড়ন নজিরবিহীন। এই নিপীড়ন ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। অতিমাত্রায় উৎসাহী কর্মকর্তারা আমাদের দলের বন্দীদের বিরুদ্ধে এক ধরনের যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন।' তিনি বন্দীদের ওপর এ ধরনের নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। একই সঙ্গে বন্দীদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোরালো আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের প্রাক্কালে শাহবাগ থেকে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের তাড়িয়ে দেওয়া এবং জাতীয় জাদুঘরের সামনে সমাবেশে বাধা দেওয়ার জন্য সরকারের সমালোচনা করেন বিএনপির জেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব। তিনি বলেন, 'জোরপূর্বক গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ব্যক্তিরা নিজেদের পক্ষে কথা বলতে পারেন না। গুম, ক্রসফায়ার ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করে এই সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা এমনভাবে টিকিয়ে রাখতে চায়, যাতে তার অপরাধের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে না পারে।' রিজভী দাবি করেন, আজ বিকেল ৫টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশ বিএনপির ১৭৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত তাদের দলের ২০ হাজার ৬৬৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিএনপির বন্দী নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়ন এবং সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের অংশীদার বিএনপি: কাদের
বিএনপি বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের অংশীদার বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। কাদের বলেন, 'বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা, গণতন্ত্রকে সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো এবং এ পথকে মসৃণ করার লক্ষ্যে আমরা বিরামহীন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বারবার এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন—আমাদের নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ। সুতরাং নিষেধাজ্ঞা আরোপের কোনো যৌক্তিক কারণ আমরা দেখছি না। 'বরং নির্বাচনকে যারা বাধাগ্রস্ত করার জন্য সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে, গুপ্ত হত্যা, জ্বালাও-পোড়াও, গুপ্ত হামলা; এদের ওপরই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত,' বলেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিএনপি নির্বাচনে আসেনি, অংশ নেয়নি। নির্বাচনের বিরুদ্ধে তাদের আন্দোলন এ যাবত ব্যর্থ হয়েছে। ব্যর্থ আন্দোলন করে তারা ক্ষান্ত হয়নি, তারা এখন নাশকতার পরিকল্পনা করছে, বাস পোড়াচ্ছে, গুপ্ত হামলা চালাচ্ছে, গুপ্ত হত্যা করছে, ট্রেনে আগুন দিচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩০০টি পরিবহনে তারা আগুন দিয়েছে। লাইনের ওপর দাঁড়ানো ট্রেনে পর্যন্ত তারা আগুন দিয়েছে।' মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বিএনপি সারা দেশে কর্মসূচির নামে নাশকতা করার পরিকল্পনা নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা এ ব্যাপারে; যারা নির্বাচনের পক্ষের শক্তি, তাদের অনুরোধ করছি, আপনারা ঐক্যবদ্ধভাবে এবং জনগণের মধ্যে যারা আজ নির্বাচনের পক্ষের শক্তি, তারা ঐক্যবদ্ধভাবে এদের এই নাশকতা, গুপ্ত হত্যা, অগ্নি সন্ত্রাস প্রতিরোধ করতে সতর্ক-সজাগ থাকবেন। 'আমাদের দলের নেতাকর্মীদেরও সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে, যেন বিএনপি কর্মসূচির নামে কোথাও কোনো নাশকতা করতে না পারে,' নির্দেশ দেন তিনি। নির্বাচনকে ঘিরে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'এসব নিয়ে আমরা বিচলিত নই। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নির্বাচনের পরেও বিভিন্ন রকমের চাপ আসতে পারে। বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির অশুভ পরিকল্পনাও তাদের রয়েছে। 'এসব মোকাবিলা করার মতো মানসিক শক্তি, রাজনৈতিক শক্তি, দৃঢ়তা আমাদের আছে। আওয়ামী লীগ বারে বারে ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই আজকের আওয়ামী লীগ। এই আওয়ামী লীগের পথ-পরিক্রমা ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই বারে বারে আমরা গণতন্ত্রের সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়েছি। এখনো গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার যে লড়াই, সেই লড়াইয়ে যত বাধাই আসুক, যত ষড়যন্ত্রই হোক, আমরা এই নির্বাচন অবশ্যই সফল করা এবং এই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করার যে লড়াই—এ লড়াইয়ে আমরা অবিচল। আমরা পাহাড়ের মতো অনড়,' যোগ করেন তিনি। আওয়ামী লীগ সভাপতি পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছিলেন একটি ঘোষণাতে যে, এবার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তাদের দমন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে; স্থানীয় সংসদ সদস্যরা...এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর সংক্রান্ত জটিলতা তৈরি করে (স্বতন্ত্র প্রার্থী) তাদের হেনস্থা করা হচ্ছে বলে একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন। এটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে কমিউনিটির কাছে যে দায়বদ্ধতা আওয়ামী লীগের, একে ক্ষতি করবে কি না জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের কাদের বলেন, 'এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। আমরা তো এই অফিসেই বসে থাকি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত।' তিনি আরও বলেন, 'নেত্রী যা বলেছেন, অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে আমরা সচেষ্ট।' দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় কী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে কাদের বলেন, 'প্রতি নিয়ত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং এখানে যারা বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, আমাদের অর্থ বিভাগ—নেত্রী প্রায় প্রতিদিনই এদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছেন। ভবিষ্যতে সংকট যাতে না হয়, সংকট এড়ানো যায়, সে ব্যাপারে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়; এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত সক্রিয় এবং সচেষ্ট।' বিএনপি নিজেরাই অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে, তারা কীভাবে দুর্ভিক্ষ আনবে—গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'তারা ষড়যন্ত্রের অংশীদার। এই ষড়যন্ত্রে অনেকেই আছে। দেশে আছে, বিদেশেও আছে। গণআন্দোলন করতে বিপুল জনগোষ্ঠী লাগে কিন্তু ষড়যন্ত্র করতে, গুপ্ত হত্যা করতে, নাশকতা করতে বেশি লোক লাগে না। আর লোক না থাকলে রাস্তার টোকাই ভাড়া করে বাসে আগুন লাগায়।' আপনারা বলছেন, বিচলিত নন, কোনো চাপ অনুভব করছেন না। একইসঙ্গে জাতিসংঘের কাছে চিঠি পাঠানোর বিষয় সম্পর্কে বলবেন—গণমাধ্যমকর্মীরা মত জানতে চাইলে কাদের বলেন, 'যেহেতু জাতিসংঘ থেকে কিছু কথা বলা হচ্ছে। জাতিসংঘ বিশ্বের সকল দেশের। আমরা জাতিসংঘের সদস্য। কাজে অভিযোগের বিষয়টা রাজনৈতিক ব্যাপার জাতিসংঘের কাছে যায়। কিছু কিছু চাপের ব্যাপার নিশ্চয়ই আছে। তা না হলে এত কিছু হলো কেন! বাংলাদেশে গত কয়েক মাস কত রকমের ঘটনা ঘটে গেল। এই নিষেধাজ্ঞা আসে, এই ভিসা নীতি আসে! এসব তো ছিল। সেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘকে জানিয়ে রাখলেন যে, আমরা ভালো নির্বাচন করছি। কোনো অসুবিধা নেই, অহেতুক যেন কেউ আমাদের চাপ না দেয়।'
বিএনপি বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের অংশীদার বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ওসির বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র সামশুলের প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আ. লীগ প্রার্থীর
চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছেন যে, তিনি (ওসি) স্বতন্ত্র প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরীর প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছেন। স্থানীয়দের মতে, এ ঘটনার তাৎপর্য অপরিসীম। কেননা এটি ইঙ্গিত দেয় যে, এই আসনে আগামী দিনগুলোতে নির্বাচনের গতিপথ কীভাবে মোড় নেবে। ইতোমধ্যে দুই প্রার্থীর মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়েছে, যা নির্বাচনী প্রচারণায় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ কারণে নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পাশাপাশি উভয় প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সামশুল হক বর্তমান সংসদের হুইপ এবং আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত টানা তিনবার চট্টগ্রাম-১২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বৃহস্পতিবার দায়ের করা আবেদনে মোতাহেরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তিনদিন আগে ওসি নেজাম উদ্দিন পটিয়ার রশিদাবাদে হুইপের গ্রামের বাড়িতে তার সঙ্গে 'গোপন' বৈঠক করেন এবং হুইপ সামশুল তার ক্ষমতা ব্যবহার করে ১২ নভেম্বর পটিয়া থানার আগের ওসিকে বদলি করেন এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগমুহূর্তে নেজাম উদ্দিনকে পটিয়া থানায় বদলি করে আনেন। আবেদনে মোতাহেরুল ইসলাম জানান, ওসি নেজাম উদ্দিন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের হুমকি দিয়ে আসছেন। নেজাম উদ্দিন পটিয়া থানার ওসি পদে থাকলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের স্বার্থে নেজাম উদ্দিনকে পটিয়া থানা থেকে বদলির প্রয়োজন। এ বিষয়ে জানতে মোতাহেরুল ইসলামের মুঠোফোনে কল করলে তার সহকারী রিসিভ করে বলেন, মোতাহেরুল ইসলাম ব্যস্ত আছেন, একটু পর তিনি নিজে আপনাকে কল করবেন। পরে আরও কয়েক দফা কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। অপরদিকে হুইপ সামশুল হক দেশে না থাকায় তার মন্তব্য জানা যায়নি। নিজের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ বিষয়ে পটিয়া থানার ওসি নেজাম উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী কাজ করছেন। বলেন, 'আমরা এখন নির্বাচন কমিশনের অধীন।' হুইপের সঙ্গে বৈঠকের অভিযোগ বিষয়ে ওসি বলেন, 'এই অভিযোগ সত্য নয়। কেউ প্রমাণ করতে পারলে আমি চাকরি থেকে পদত্যাগ করব।' হুইপের তদবিরে পটিয়া থানায় বদলি হওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমার কর্তৃপক্ষ পুলিশ বিভাগ, হুইপ নন।' চট্টগ্রাম-১২ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মোতাহেরুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, পটিয়া থানার ওসি একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছেন।' তিনি বলেন, 'অভিযোগ যে কেউ করতে পারেন। অভিযোগ সত্য কি না, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।' এদিকে, চট্টগ্রাম-১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে জানান স্থানীয়রা। শামসুল হক টানা তিন মেয়াদে এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর তার বেশ ভালো নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বলে দলের অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে। এ ছাড়াও, উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা এলাকায় তার অনুসারী হিসেবে পরিচিত। যে কারণে সামশুল হকের পক্ষ নির্বাচনী লড়াইয়ে শক্ত অবস্থানে থাকবেন। স্থানীয়দের মতে, তিন বারের সংসদ সদস্য হিসেবে সামশুল হক এলাকায় বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের সুযোগ পেয়েছেন, যার জন্য তিনি ভোটারদের সহানুভূতি পেতে পারেন। অপরদিকে, মোতাহেরুল ইসলাম পটিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং দলের একজন প্রবীণ ও নিবেদিতপ্রাণ নেতা হিসেবে তিনি তৃণমূল ভোটারদের মনোভাব বেশ ভালোই বোঝেন। মোতাহেরুল ইসলামের অনুসারীদের মতে, পটিয়ার আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মীরা সামশুল হককে বহিরাগত বলে মনে করে, যিনি ২০০৮ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেছেন বলে তাদের অভিযোগ। আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল দলের নিবেদিতপ্রাণ নেতাদের মধ্য থেকে কাউকে প্রার্থী করা। তাই তারা জানান, এবার দল মোতাহেরুল ইসলামকে মনোনয়ন দেওয়ায় তাদের সেই দাবি পূরণ হয়েছে। পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম শামসুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলামের বিজয়ের জন্য দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ।' তিনি বলেন, 'সামশুল হককে তিন মেয়াদে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল এবং এখন দল একজন নিবেদিতপ্রাণ নেতা মোতাহেরুল ইসলামকে মনোনয়ন দিয়েছে। এতে সামশুল হকের বরং খুশিই হওয়া উচিত ছিল, কারণ তাকে আমরা তিনবার নির্বাচিত করেছি। আমরা আশা করি, এবার দলের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান দেখিয়ে সামশুল হক তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন।' সামশুল হক শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকলে কঠিন লড়াই হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে শামসুজ্জামান বলেন, 'মোতাহেরুল ইসলামের জয়ের জন্য আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ হওয়ায় আর বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় কঠিন লড়াইয়ের কোনো সম্ভাবনা নেই।' তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পটিয়ার কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা জানান, সামশুল হক শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকলে মোতাহেরুল ইসলাম ও সামশুল হকের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। এ বিষয়ে জঙ্গলখাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সবুজ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'একদিকে হুইপ সামশুল হক পটিয়ার জনগণের কাছে জনপ্রিয়, অন্যদিকে মোতাহেরুল ইসলাম আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ায় নির্বাচনে ভালো লড়াই অপেক্ষা করছে।' 'আমরা একটি উৎসবমুখর, জমজমাট এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আশা করছি', বলেন তিনি।
চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছেন যে, তিনি (ওসি) স্বতন্ত্র প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরীর প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছেন।
রোববার সকাল ১১টায় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের ঘোষণা বিএনপির
আগামী রোববার সকাল ১১টায় রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ঢাকা ছাড়াও দেশের সব জেলা শহরে একইদিনে মানববন্ধন করবে সংগঠনটি। আজ শুক্রবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কথা জানান। গত দুইদিন বিএনপির অবরোধ সফল করায় দলের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ দিয়ে রিজভী বলেন, 'আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি আগামী ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে। যারা গুম-খুন হয়েছেন, তাদের পরিবারের সমন্বয়ে এই মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ঢাকা মহানগরসহ সব জেলা সদরে এই কর্মসূচি পালিত হবে।' তিনি জানান, 'ঢাকায় মানববন্ধন হবে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ১১টায়। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর বিএনপি সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে এবং ঢাকার বাইরে অন্যান্য জেলায় মানববন্ধন সফল করতে নেতাকর্মীরা প্রস্তুতি নিয়েছে। রিজভী বলেন, 'সরকারের দিক থেকে সব বাধা-বিপত্তি যদি আসে সবকিছুকে প্রতিহত করে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে এই মানববন্ধন কর্মসূচি সফল করতে হবে।' 'ঢাকাসহ সারা দেশের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বলব, তারা এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে যেসব পরিবার নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, গুম-খুন হয়েছেন, সেসব পরিবারের সদস্যদের আপনারা মানববন্ধনে আনবেন,' বলেন তিনি। ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ পুলিশ পণ্ড করে দেওয়ার পর থেকে বিএনপি হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে। সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারে অধীনে নির্বাচন এবং তফসিল বাতিলের দাবিতে দশম দফায় ২০ দিন অবরোধ এবং ৩ দফায় ৪ দিন হরতাল কর্মসূচি করেছে। রিজভী বলেন, 'এসব কর্মসূচি অনাচারের বিরুদ্ধে, অবিচারের বিরুদ্ধে, অত্যাচারের বিরুদ্ধে। সরকারের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, 'তাদের কাছে নাশকতার সংজ্ঞা হলো, গণতন্ত্রের পক্ষে, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলা। এ ধরনের কথা বলা মানেই একজন নাশকতাকারী।' নিজের হাতে ক্ষমতা ধরে রাখতে স্বৈরাচারে রূপান্তরিত হয়েছে আওয়ামী সরকার। তারা দেশ থেকে রাষ্ট্র থেকে সমাজ থেকে সত্য কথা ভুলিয়ে দিতে চাচ্ছে। এ রকম একটি পরিস্থিতি তৈরি করেছে যেখানে সত্য কথা, মানুষের অধিকারের পক্ষে কথা বলা সবচেয়ে বড় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়,' যোগ করেন তিনি। গত ২৪ ঘণ্টায় বিএনপির ২১৫ জনের বেশি নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে দাবি করে রিজভী বলেন, 'সাতটি মামলায় সাড়ে ৮০০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।'
আগামী রোববার সকাল ১১টায় রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
গার্মেন্টসকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহারের পাঁয়তারা চলছে দেশ-বিদেশে: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের গার্মেন্টস সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চলছে। নিজেদের বাণিজ্যিক স্বার্থে একটি মহল শ্রমিকদের ব্যবহারের পাঁয়তারা করছে। আমাদের অর্থনৈতিক স্বার্থে গার্মেন্টসের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রাখতে হবে। আজ শুক্রবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, 'গার্মেন্টসকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করার পাঁয়তারা আছে দেশ-বিদেশে। প্রধানমন্ত্রী গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন বাড়িয়েছেন। এই সেক্টর উন্নয়নে, শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণে আরও কিছু করার ব্যাপারেও সরকার অত্যন্ত যত্নশীল। কাজেই বিষয়টি নিয়ে পানি ঘোলা করার কারণ নেই।' মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র যদি নিষেধাজ্ঞা দিতে চায়, সেটা শুধু বিএনপি ও তার দোসরদের দিতে পারে। তারা এ নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। 'আমরা কোনো নিষেধাজ্ঞা নিয়ে উদ্বিগ্ন নই। আমরা আমাদের সংবিধান মেনে স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি শান্তিপূর্ণ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এখানে নিষেধাজ্ঞা আসবে কেন? নিষেধাজ্ঞা এখন কম্বোডিয়ায় দিয়েছে, এটা তাদের ব্যাপার, কেন দিয়েছে,' যোগ করেন তিনি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আমেরিকা তো বলছে, যারা সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দেবে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আসবে। সেটা হচ্ছে না কেন? তারা নাশকতা করছে, গাড়ি জ্বালাচ্ছে, ট্রেন পোড়াচ্ছে, মানুষ মারছে। এটাই তো সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের বিরোধিতা। যুক্তরাষ্ট্র যদি নিষেধাজ্ঞা দিতে চায় সেটা শুধু একমাত্র বিএনপি ও তার দোসররাই নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে।' 'নির্বাচন কমিশন সবসময় স্বাধীন' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'নির্বাচন কমিশনকে আমরা সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। নির্বাচন পর্যন্ত আমরা তাদের সহযোগিতা দিয়ে যাব। কোনো বাধা বিপত্তি, হুমকি, নাশকতা, সন্ত্রাস নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধা হতে পারে না। কারণ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ দেশের জনগণ আজ নির্বাচনমুখী। নির্বাচনমুখী ভোটাররা যেকোনো উপায়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানে বদ্ধপরিকর। এতে যারা বাধা দেবে, কার্যক্রমের বিপত্তি সৃষ্টি করবে, তাদেরকে দেশের ভোটাররাই প্রতিহত করবে।' তিনি বলেন, 'নির্বাচনে বিএনপি ও তার সহযোগীরা অনেকে অংশ নেয়নি। তবে সারাদেশে একইভাবে নির্বাচনের তৎপরতা চলছে। স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি চলছে।' জাতীয় পার্টি কি প্রধান বিরোধী দল হয়ে উঠতে পেরেছে? এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'এটা জাতীয় পার্টিকে জিজ্ঞাসা করুন। তারা কী ভূমিকা রাখতে চায়। আমাদের সঙ্গে বসলে আমরা তাদের নীতি আদর্শ নিয়ে কথা বলি না।' স্বতন্ত্র প্রার্থী না থাকলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, '১৭ তারিখের আগে এ ব্যাপারে মন্তব্য না করাই ভালো।' ওবায়দুল কাদের বলেন, 'স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনে জেতার জন্য আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে কথা বলবে। পাবলিকের সাপোর্ট নেওয়ার জন্য তো বিরুদ্ধে কথা বলবেই।' এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, মারুফা আক্তার পপি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের গার্মেন্টস সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চলছে। নিজেদের বাণিজ্যিক স্বার্থে একটি মহল শ্রমিকদের ব্যবহারের পাঁয়তারা করছে। আমাদের অর্থনৈতিক স্বার্থে গার্মেন্টসের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রাখতে হবে।
দুই মেয়াদে ফুলে ফেঁপে উঠেছে এমপি জিন্নাহর সম্পদ, স্ত্রীও হয়েছেন কোটিপতি
পাঁচ বছর আগে যার কৃষি জমি ছিল মাত্র দেড় শতকের কম, বর্তমানে তার কৃষি জমি ১২০০ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৬৯৩ শতক। পাঁচ বছর আগে যার বার্ষিক আয় ছিল মাত্র ৩ লাখ টাকার কিছু বেশি, আজ তার ও পরিবারের সদস্যদের বার্ষিক প্রায় ৭০ লাখ টাকা। ১০ বছর আগে যার অস্থাবর সম্পদের মূল্য ছিল ৮ লাখ টাকার নিচে, এখন তার অস্থাবর সম্পদের মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। ২০১৩ সালে যার স্থাবর সম্পদ ছিল মাত্র ৫ লাখ টাকার, আজ তার স্থাবর সম্পদ ৪৯ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে আড়াই কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, ১০ বছর আগে স্ত্রীর কাছে নগদ টাকা ছিল মাত্র ৫০ হাজার, আর আজ স্ত্রীর হাতে নগদ টাকা রয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। স্ত্রীর বর্তমান অস্থাবর সম্পদের মূল্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা। ১০ বছর আগে স্ত্রী ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা কোনো আয় না করলেও বর্তমানে তারা কোটিপতি। আর এ সবই সম্ভব হয়েছে পরপর দুবার এমপি নির্বাচিত হওয়ার সুবাদে। বগুড়া-২ আসনের (শিবগঞ্জ উপজেলার) জাতীয় পার্টির নেতা শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ আওয়ামী লীগের জোট হিসেবে ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হন। এর পরে ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনেও তিনি জাতীয় পার্টি থেকে এমপি নির্বাচিত হন। এরপর তার সম্পদ বেড়েছে কমপক্ষে ৩০ গুণ আর তার পরিবারের সদস্যদের ধন -সম্পদ ফুলে ফেঁপে উঠেছে শতগুণ। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনে জিন্নাহর জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ২০১৮ সালে জিন্নাহর আয়ের উৎস ছিল কৃষি, বাড়িভাড়া ও ব্যবসা। কৃষি খাত থেকে সেই সময় তার বার্ষিক যায় ছিল মাত্র ২০০০ টাকা, বাড়ি বা দোকান ভাড়া থেকে পেতেন মাত্র ১৮০০ টাকা এবং ব্যবসা (ইট ভাটা) থেকে বার্ষিক আয় করতেন ৩ লাখ ১৫ হাজার ৮০০ টাকা। এই সময় তার ওপর নির্ভরশীল পরিবারের কেউ কোনো আয় করতেন না। এমনকি ২০১৩ সালেও তার আয় ঠিক একই রকম ছিল। কিন্তু গত পাঁচ বছরে জিন্নাহ ও তার পরিবার যেন আলাদিনের চেরাগ হাতে পেয়েছেন। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে জিন্নাহর দেওয়া হলফনামায় দেখানো হয়েছে, বছরে তার আয় ৩ লাখ ১৯ হাজার ৬০০ টাকা। এই সময়ে তার স্ত্রী বা পরিবারের অন্য কারো কোনো আয় ছিল না। কিন্তু বর্তমানে জিন্নাহর নিজের বাৎসরিক আয় দেখানো হয়েছে ৪১ লাখ ১৫ হাজার ৫৬১ টাকা, তার ওপর নির্ভরশীলদের যায় দেখানো হয়েছে ২৮ লাখ ৩৫ হাজার ২০০ টাকা। অর্থাৎ এখন তার পরিবারের মোট বার্ষিক আয় ৬৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৬১ টাকা, যা গত ১০ বছরের তুলনায় প্রায় ২১ দশমিক ৭৫ গুণ বেশি। ২০১৩ সালে জিন্নাহর অস্থাবর সম্পদ ছিল নগদ টাকা, একটি মোটরসাইকেল, স্বর্ণালংকার, ইলেকট্রনিকস সামগ্রী ও আসবাবপত্র, যার মোট মূল্য ছিল মাত্র ৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। বর্তমানে জিন্নাহর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকা ৯৭.৯৪ লাখ, ব্যাংকে জমা ৭২.৬৯ লাখ, একটি ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি যার দাম ধরা হয়েছে ১.১ কোটি, স্বর্ণ রয়েছে ৭৫ হাজার টাকার, আসবাবপত্র ৮০ হাজার টাকার এবং ব্যবসায় স্থায়ী বিনিয়োগ রয়েছে ১৮.৬২ লাখ টাকা। বর্তমানে তার নিজ নাম অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ মোট ২ কোটি ৯১ লাখ ৭৭ হাজার ২৬ টাকা। অর্থাৎ টানা দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরে তার অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে ৩৮ গুণের বেশি । ২০১৩ সালের হলফনামা অনুযায়ী, স্ত্রীর নাম অস্থাবর সম্পদ ছিল মাত্র ৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকার। বর্তমানে স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ হিসেবে রয়েছে নগদ টাকা ১ কোটি ২৬ লাখ, ব্যাংকে রয়েছে ৬২.৮৪ লাখ, পোস্টাল, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ রয়েছে ২৮ লাখ, একটি ট্রাক রয়েছে যার দাম ধরা হয়েছে ১৫.২৫ লাখ, ৪০ তোলা স্বর্ণ রয়েছে যার দাম ধরা হয়েছে ২ লাখ, এ ছাড়া ১ লাখ টাকার ইলেকট্রনিকস সামগ্রী ও ১ লাখ টাকার আসবাবপত্র ধরা হয়েছে। বর্তমানে স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের মোট মূল্য ধরা হয়েছে ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার ৩৩০ টাকা। অর্থাৎ গত ১০ বছরে স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে সাড়ে ২৬ গুণের বেশি। এ সময় স্ত্রী ছাড়া পরিবারের আর কারো অস্থাবর সম্পদ না থাকলেও বর্তমানে স্ত্রী ছাড়া তার ওপর নির্ভরশীল পরিবারের অন্য সদস্যদের অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ৯৯.২৯ লাখ টাকার। ২০১৩ সালের হলফনামা অনুযায়ী জিন্নাহর স্থাবর সম্পদ ছিল ১ দশমিক ৪০ শতক জমি, যার দাম ধরা হয়েছিল ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। অকৃষিজ জমির পরিমাণ উল্লেখ ছিল না, কিন্তু দাম ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এ ছাড়া একটি পুকুর ছিল যার দাম ধরা হয়েছিল ৮০ হাজার টাকা। অর্থাৎ ২০১৩ সালে জিন্নাহর মাত্র ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ ছিল। বর্তমানে জিন্নাহর স্থাবর সম্পদের মোটমূল্য উল্লেখ করা হয়েছে ২ কোটি ৬১ লাখ ৮৯ হাজার ১৪৫ টাকা। গত ১০ বছরের তুলনায় বেড়েছে ৪৯ গুণের বেশি (৪৯.৪২ গুণ)। অন্যদিকে ২০১৩ সালে জিন্নাহর স্ত্রীর স্থাবর সম্পদ ছিল মাত্র ৯ লাখ ২০ হাজার টাকার। এর মধ্যে কৃষি জমি ছিল দশমিক ৭ শতক যার মূল্য ছিল ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং শহরে একটি পাকা বাড়ি ছিল যার দাম ধরা হয়েছিল ৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা মাত্র। বর্তমানে জিন্নার স্ত্রীর নামে কৃষি জমি রয়েছে ১৫৬ শতক যার মূল্য ধরা হয়েছে ২৭ লাখ টাকার বেশি। ২০১৩ সালে পরিবারের অন্য আর কোনো সদস্যের স্থাবর সম্পদ না থাকলেও বর্তমানে জিন্নাহর ওপর নির্ভরশীল অন্য সদস্যদের নেমে অকৃষিজ যে জমি রয়েছে তার দাম ১০ লাখ ২৬ হাজার টাকা। ২০১৮ সালের হলফনামাতে অন্যান্য অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নাম একটি ৩২ বোর পিস্তল ছিল যার দাম উল্লেখ করা হয়েছে ১৫০০ টাকা এবং নিজের নাম আরও একটি ২২ বোরের মিনি রাইফেল ছিল যার দাম ধরা হয়েছে ১ লাখ টাকা। বর্তমান হলফনামার অস্ত্র দুটির কথা উল্লেখ নেই। পাঁচ বছর আগে শরিফুল ইসলাম জিন্নাহর নাম কোন মামলা ছিল না। কিন্তু এবার দুদক জ্ঞাতআয় বহিৰ্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগে দুটি মামলা করেছে। হলফনামায় দেখানো হয়েছে মামলা দুটি তদন্তাধীন আছে।
পাঁচ বছর আগে যার কৃষি জমি ছিল মাত্র দেড় শতকের কম, বর্তমানে তার কৃষি জমি ১২০০ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৬৯৩ শতক। পাঁচ বছর আগে যার বার্ষিক আয় ছিল মাত্র ৩ লাখ টাকার কিছু বেশি, আজ তার ও পরিবারের সদস্যদের বার্ষিক প্রায় ৭০ লাখ টাকা।
আগামী রোববার হরতাল-অবরোধ দিচ্ছে না বিএনপি
নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত ২৯ অক্টোবর থেকে হরতাল ও অবরোধ দিয়ে যাচ্ছে বিরোধী দল বিএনপি। তবে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আগামী রোববার অবরোধ বা হরতালের মতো কর্মসূচি থেকে বিরত থাকবে দলটি। হরতাল বা অবরোধ না করে দলটি 'সরকারি দমন-পীড়ন'র প্রতিবাদে সারা দেশে মানববন্ধন করবে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আজ বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন। বিএনপি সূত্র জানায়, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তারসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ধরতে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করবে দলটির নেতাকর্মীরা। সেখানে ভুক্তভোগী বিএনপি নেতাকর্মীদের পরিবার উপস্থিত থাকবে। অন্যান্য বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরেও একই ধরনের মানববন্ধনের আয়োজন হবে বলে জানিয়েছে বিএনপি সূত্রটি। নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে বিএনপির ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ আগামীকাল সকাল ৬টায় শেষ হবে। গত ২৯ অক্টোবর থেকে সারা দেশে লাগাতার অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি।
নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত ২৯ অক্টোবর থেকে হরতাল ও অবরোধ দিয়ে যাচ্ছে বিরোধী দল বিএনপি। তবে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আগামী রোববার অবরোধ বা হরতালের মতো কর্মসূচি থেকে বিরত থাকবে দলটি।
শাহবাগে যাত্রীবাহী বাসে আগুন
রাজধানীর শাহবাগে যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে তরঙ্গ পরিবহনের বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশনের ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ করে। সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার দেওয়ান মো. রাজীব দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বাসের চালকের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, 'তরঙ্গ পরিবহনের বাসটিতে কাঁটাবন থেকে কয়েকজন যাত্রী ওঠে। শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটের সামনে বাসে আগুন দিয়ে তারা নেমে পালিয়ে যায়।' দুপুর ১টা ৫২ মিনিটের দিকে আগুন নির্বাপণ হয় বলে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে। এর আগে সকালে মতিঝিলে গাজীপুর পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
রাজধানীর শাহবাগে যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে এখনো দ্বিধায় আছে জাতীয় পার্টি: চুন্নু
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে জাতীয় পার্টি আসন বণ্টনের প্রয়োজনীয়তা দেখছে না বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি জানান, সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে তার দল এখনো দ্বিধায় আছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠকে ক্ষমতাসীন দলের ইতিবাচক মনোভাব দেখতে পেয়েছেন জানিয়ে চুন্নু বলেন, 'এখনো বলছি, গত পাঁচ বছরে উপনির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে আমাদের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। তাই আমাদের দ্বিধা আছে; এখনো আছে।' তিনি বলেন, 'আসন বণ্টনের কোনা কথা আমরা বলিনি। খুব একটা প্রয়োজনও আছে বলে আমরা মনে করি না। জাতীয় পার্টি মনে করে, সারা দেশে ভোটাররা যদি ভোট কেন্দ্রে আসতে পারে এবং ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, ভোটটা দিতে পারে তাহলে জাতীয় পার্টি এবার বলা যায় না; একানব্বই সালের মতো একটা নীরব ভোটের বিপ্লব হয়ে যেতে পারে। আমরা খুবই আত্মবিশ্বাসী।' জাপা মহাসচিব বলেন, 'তাই আমরা চেষ্টা করছি, নির্বাচনটা সুষ্ঠু করার জন্য। ক্ষমতাসীন দলের কাছে এটাই আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য ছিল যে, যা যা প্রয়োজন অকুণ্ঠ চিত্তে আপনারা নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করেন। যেন ভোটারদের আস্থা ফিরে আসে ভোটকেন্দ্রে আসার। 'তারা (আওয়ামী লীগ) আমাদের কথা দিয়েছেন, যে কোনো মূল্যে তারা নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করবেন। যেন ভোটকেন্দ্রে ভোটাররা আসতে পারে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যাতে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে। প্রশাসন যাতে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে। কোনো কারণ স্থানীয়ভাবে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী আমাদের কোনো লোককে হেনস্থা না করতে পারে। ভয়-ভীতি যাতে দেখাতে না পারে। এসব ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তারা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন,' জানান তিনি। চুন্নু বলেন, 'তাদের আশ্বাসে আমরা মোটামুটিভাবে আশ্বস্ত হয়েছি, বিশ্বাস করেছি। বাকি আগামী দিনগুলোতে কী হবে সেটার অপেক্ষায় আমরা নিশ্চয়ই থাকব এবং নির্বাচনী কর্মকাণ্ড করে যাব। 'আমরা বিশ্বাস করি এবার, জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হবে এবং এটাও বিশ্বাস করি, যেহেতু জাতীয় পার্টি বড় দল নির্বাচনে আসছে, প্রায় প্রত্যেক আসনে প্রার্থী দিয়েছে, তাই নির্বাচনটা অবশ্যই অংশগ্রহণমূলক এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে। এই আশা করেই আমরা এখন পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে আছি এবং থাকব,' যোগ করেন তিনি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে জাতীয় পার্টি আসন বণ্টনের প্রয়োজনীয়তা দেখছে না বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
আসন বণ্টন নয়, জাপা ও ১৪ দলের সঙ্গে রাজনৈতিক আলাপ হয়েছে: কাদের
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন বণ্টন নিয়ে জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি জানান, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে রাজনৈতিক আলোচনা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। কাদের বলেন, 'আজ সকালে মুরগির বাচ্চাবাহী একটি কাভার্ড ভ্যান সিরাজগঞ্জে পোড়ানো হয়েছে। এতে সাত হাজার মুরগির বাচ্চা পুড়ে গেছে। এখন মুরগির বাচ্চাও ওদের শত্রু। মুরগির বাচ্চাও ওদের টার্গেট। নাশকতা, গুপ্ত হামলার আজকে যে ভয়াবহ চিত্র সেটা নতুন নতুন রেকর্ড স্থাপন করছে। গতকাল পর্যন্ত প্রায় ৬০০ যানবাহন পোড়ানো-ভাঙচুর, ১০টি রেলে আগুন দেওয়া হয়েছে।' তিনি বলেন, 'বিএনপির আন্দোলন ও অগ্নি সন্ত্রাসে পুলিশ বাহিনীর সদস্য, পরিবহন শ্রমিক, রাজনৈতিককর্মীসহ কয়েকজন মৃত্যুবরণ করার পাশাপাশি আড়াই শতাধিক মানুষ মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। এই নৃশংস রাজনীতি মাঝে মাঝে আমাদের মনে করিয়ে দেয়, গাজায় ইসরায়েলের যে হামলায় এ পর্যন্ত ১৬ হাজার মানুষ রক্তাক্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে। এর মধ্যে ছয় হাজার বাচ্চা। 'এরা যখন মুরগির বাচ্চাকে টার্গেট করেছে, তখন এদের গুপ্ত হামলার টার্গেট আরও বিস্তৃত হতে পারে। আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, নির্বাচন বানচালের জন্য এরা ততই মরিয়া হয়ে উঠছে এবং মরণ কামড় দিচ্ছে,' বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি আরও বলেন, 'সে কারণেই আমরা আজকে নির্বাচনমুখী যেসব রাজনৈতিক দল আছে; যাদের সঙ্গে আগে আমাদের জোট ছিল-মহাজোট ছিল, তাদের সঙ্গে আমরা আমাদের সহযোগিতা, আমাদের সম্পর্ক আরও জোরদার করার তাগিদ অনুভব করছি। যে কারণে ১৪ দলের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। আমরা জাতীয় পার্টির সঙ্গেও আলোচনা করেছি।  'সেটার মূল বিষয়টাই ছিল যে, নির্বাচনটাকে অবাধ, শন্তিপূর্ণ এবং সুষ্ঠু করার জন্য যারা নির্বাচনমুখী, তাদের নিয়ে আমরা সমন্বিতভাবে-ঐক্যবদ্ধভাবে গুপ্ত হামলা, নাশকতা, নির্বাচনবিরোধী অপকর্মকে আমরা প্রতিহত করব ভোটারদের নিয়ে। এটাই আসলে আমাদের আলাপ-আলোচনার মূল বিষয়; যেটা রাজনৈতিক,' যোগ করেন তিনি। জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈঠক নিয়ে লুকোচুরি কেন জানতে চাইলে কাদের বলেন, 'লুকোচুরি নেই। এটা নিয়ে এত ঢাকঢোল পেটানোর কী আছে! নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী যে রাজনৈতিক দল, এদের মধ্যে একটা সমন্বয় থাকা দরকার। কারণ নির্বাচনবিরোধী শক্তি যে অপরাজনীতি করছে, এটা মোকাবিলা করার জন্য আমাদের মধ্যে সমন্বয়, একটা ঐক্য দরকার। কারণ নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ করা, গ্রহণযোগ্য করা অবাধ ও সুষ্ঠু করার অঙ্গীকার আমাদের রয়েছে। সে জন্য আমরা নিজেরা আলাপ-আলোচনা করছি। এখানে লুকোচুরির কোনো ব্যাপার না।' আসন বণ্টন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাদের বলেন, 'সিটা ভাগাভাগি আমাদের আলোচনায় ছিল না। আমরা রাজনৈতিক আলোচনা করেছি। নির্বাচনটা যাতে ভালোভাবে হয়।' বাংলাদেশ নিয়ে আওয়ামী লীগ নতুন করে কোনো ষড়যন্ত্র দেখছে কি না—গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'বাংলাদেশের ব্যাপারে এখন অনেকগুলো বিবৃতি দেওয়ার ব্যাপার ছিল কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব দেশ এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে বিরূপ বক্তব্য দেওয়া বা চরম পন্থায় যাওয়া; এ নিয়ে বিভেদ আছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে টানাপোড়েন আছে। বিদেশে আমরাও তো বন্ধুহীন নই! আমাদেরও বন্ধু আছে। বাংলাদেশের সব খোঁজ-খবর তারাও রাখে। তারাও জানেন এখানে কী অবস্থার মধ্যে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নির্বাচন করে যাচ্ছেন, নির্বাচনের পথে হাঁটছেন। দেশটা যাবে বিশৃঙ্খলার আবর্তে ডুবে না যায়, ভেসে না যায়। সে জন্য এটা আমাদের জাতীয় পবিত্র কর্তব্য। সে কর্তব্য আমরা পালন করে যাচ্ছি।' জাতীয় নির্বাচনে যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে তাদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী। নেতাদের কারণে কর্মীরাও বিভক্ত হয়ে পড়ছে। ভবিষ্যতে এটা বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করেন—জানতে চাইলে কাদের বলেন, 'বিষফোঁড়া কেন হবে আমি জানি না। এটা আমাদের নির্বাচনী রণকৌশল। এখানে আমাদের নির্বাচনকে অর্থবহ করতে হবে। মোটা টার্ন-আউটের ব্যাপার আমরা মাথায় রাখছি। এটা একটা ফেয়ার কম্পিটিশন হবে। এখানে তো সংঘাত-মারামারির বিষয় নেই। 'নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন যে, স্বতন্ত্র যারা করতে চায় তারা করবে। এতে আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমরা কোনো ভিন্ন অবস্থান নেইনি। আমরা মনে করি, ফেয়ার কম্পিটিশনে যে জিতে জিতবে। অসুবিধা কী, স্বতন্ত্র হলে তার জেতার অধিকার নেই,' প্রশ্ন রাখেন তিনি। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আমরা দলগতভাবে অবশ্যই দলকে বেছে নেব প্রথমে। কারণ দলই আমাদের কাছে মূল ব্যাপার। স্বতন্ত্রদের দেওয়া হয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য। যদি জনগণের ভোটে তারা এগিয়ে যায়, সেখানে আমাদের কী করার আছে?' নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে কি চুপিসারে আওয়ামী লীগ সমঝোতায় যাচ্ছে অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে—জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা আলোচনার সুবিধার্থে; এখন আমরা একটা বৈঠক করছি, এ রকম বৈঠকে দলীয় নেতাকর্মীদেরও আগ্রহ থাকতে পারে। অনেকে ভিড় জমাতে পারে। এটাকে আমরা এড়াতে চেয়েছি।' জাতীয় পার্টির সঙ্গে আপনারা জোটগতভাবে নির্বাচনে যাচ্ছেন নাকি আলাদা যাচ্ছেন জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আমরা কথা-বার্তা বলছি। আমরা এ ব্যাপারে আলাপ করিনি, এ জন্য সিদ্ধান্ত হয়নি।' আরেক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছা করলেই কোনো কিছুর ব্যাপারে আমাদের ওপর একতরফা কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারবে না। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের যে বন্ধুরা আছে এই এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায়, ইউরোপে, সেই বন্ধুরা কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাপারে চরম কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষপাতী এখন আর নয়। এটাই আমরা জানি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন বণ্টন নিয়ে জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মতিঝিলে গাজীপুর পরিবহনের বাসে আগুন
বিএনপির ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের দ্বিতীয় দিনে আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার রোজিনা আক্তার দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বক চত্বরে গাজীপুর পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হলেও, স্থানীয়রা দ্রুত আগুন ফেলতে সক্ষম হয় বলেও জানান তিনি। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। গতকাল অবরোধের প্রথম দিনে ঢাকায় অন্তত ৫টি বাসে আগুন দেওয়া হয়। গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনের বিএনপির সমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিএনপি। এরপর থেকে দলটি লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে এবং অবরোধের মধ্যে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে।
বিএনপির ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের দ্বিতীয় দিনে আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
মির্জা ফখরুলকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, হাইকোর্টের রুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নুরুদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। গত ২৮ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুরের ঘটনায় করা মামলায় মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদনের শুনানি শেষে জামিন না দিয়ে রুল জারি করেন আদালত। মির্জা ফখরুলের আইনজীবী জয়নুল আবেদিন জামিন আবেদন করেছিলেন। রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় গত ২৯ অক্টোবর কারাগারে যান মির্জা ফখরুল। সেদিন সকালে রাজধানীর গুলশান-২-এর বাসা থেকে মির্জা ফখরুলকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে তাকে ডিবির মিন্টো রোডের কার্যালয়ে নেওয়া হয়। রাতে ডিবির গাড়িতে করে মির্জা ফখরুলকে আদালতে আনা হয়। ২২ নভেম্বর ঢাকার একটি আদালত মামলায় মির্জা ফখরুলের জামিন নামঞ্জুর করেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আওয়ামী লীগের কাছে ৩০ আসনে ছাড় চায় জাপা
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে আসন ভাগাভাগির বিষয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে ঐকমত্যে পৌঁছাতে অনুরোধ করেছে সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা)। রাজধানীর গুলশানে গতকাল বুধবার রাতে দুই দলের প্রতিনিধিদের মধ্যে এক বৈঠকে এ অনুরোধ জানানো হয়। বৈঠকে জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মাহবুবুল আলম হানিফ, মির্জা আজম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানা যায়নি। তবে জাপা মহাসচিব চুন্নুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আজ জাপা চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সাংবাদিকদের তিনি ব্রিফ করবেন। মাহবুবুল আলম হানিফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জাপা নেতারা নির্বাচনে সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা এবং অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস চেয়েছে।' 'আমরা তাদের অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশ্বাস দিয়েছি,' বলেন হানিফ। তিনি দাবি করেন, আসন ভাগাভাগি নিয়ে জাপা নেতারা কোনো আলোচনা করেননি। আরও'অবমূল্যায়ন' করায় নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা রওশন এরশাদের বৈঠকের পর দলের একাধিক কো-চেয়ারম্যান গুলশান-২ এ দলের এক নেতার বাসায় তাদের পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করেন বলেও সূত্র জানায়। দলের অভ্যন্তরীণ অনেকে বলছেন, নির্বাচনে শীর্ষ নেতাদের জয় নিশ্চিত করা কঠিন মনে হলে, শেষ মুহূর্তে ভোটের দৌড় থেকে জাপা সরেও যেতে পারে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে জাপা প্রার্থীদের পথ সহজ করতে ২৬টি আসনে কোনো প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে ২১টিতে জয়ী হন জাপা মনোনীত প্রার্থীরা। ওই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ উভয় দলের প্রার্থীই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন এমন ১৪৫টি আসনে জাপা প্রার্থীরা জামানত হারিয়েছেন। এবার আওয়ামী লীগ প্রায় সব আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। সব আসনে জাপার প্রার্থীও আছে। আরওজাতীয় পার্টির সঙ্গে বুধবার বসতে চায় আওয়ামী লীগ: চুন্নু আরওজাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেলেন যারা আরও‘কাদের সাহেব ঠিকই বলেছেন, এটা ভাগাভাগি ও ভাগিয়ে নেওয়ার নির্বাচন’ বৈঠকের পর দলের একাধিক কো-চেয়ারম্যান গুলশান-২ এ দলের এক নেতার বাসায় তাদের পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করেন বলেও সূত্র জানায়। দলের অভ্যন্তরীণ অনেকে বলছেন, নির্বাচনে শীর্ষ নেতাদের জয় নিশ্চিত করা কঠিন মনে হলে, শেষ মুহূর্তে ভোটের দৌড় থেকে জাপা সরেও যেতে পারে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে জাপা প্রার্থীদের পথ সহজ করতে ২৬টি আসনে কোনো প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে ২১টিতে জয়ী হন জাপা মনোনীত প্রার্থীরা। ওই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ উভয় দলের প্রার্থীই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন এমন ১৪৫টি আসনে জাপা প্রার্থীরা জামানত হারিয়েছেন। এবার আওয়ামী লীগ প্রায় সব আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। সব আসনে জাপার প্রার্থীও আছে।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে আসন ভাগাভাগির বিষয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে ঐকমত্যে পৌঁছাতে অনুরোধ করেছে সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা)।
চট্টগ্রামে বাসে ও সিরাজগঞ্জে পিকআপ ভ্যানে আগুন
চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন সিএন্ডবি এলাকায় একটি বাসে এবং সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) উত্তরের এডিসি পঙ্কজ দত্ত দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিএন্ডবি কলোনি এলাকায় আগুনের ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, 'যাত্রীদের নামিয়ে বাসের চালক চা খাওয়ার জন্য বাসটিকে রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়েছিলেন। তিনি নেমে গেলে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়।' পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি। এদিকে, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর এলাকায় একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দফতরের ডিউটি ​​অফিসার রাকিবুল হাসান জানান, রাত ৯টা ২৪ মিনিটে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলেও জানান তিনি।
চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন সিএন্ডবি এলাকায় একটি বাসে এবং সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
আ. লীগ নেতা বললেন ‘নৌকার লোক পালানোর সুযোগ পাবে না’
নৌকার লোক পালানোর জায়গা পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন নরসিংদীর মাধবদী থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম। স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুলের পক্ষে প্রচারে নেমে আজ বুধবার বিকেলে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নরসিংদী-১ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম হিরু। তিনি ছাড়াও আরও ৮ জন প্রার্থী এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুল স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিচ্ছেন। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুসারে, ১৮ ডিসেম্বর নির্ধারিত প্রতীক বরাদ্দ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না। এই আচরণবিধি ভেঙে আয়োজিত সভায় সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'মাধবদীর মেয়র মোশারফ সাহেব বক্তব্য দেওয়ার পরে দক্ষিণ এলাকার ৫টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় গণজাগরণ তৈরি হবে ইনশাল্লাহ। এই গণজাগরণে কেউ বাধা দিতে পারবে না। আপনারা যখন জানবেন মাধবদীর মেয়র মোশারফ হোসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল ভাইয়ের জন্য নামছেন, তখন কেউ বাধা দিতে পারবেন না। কাল থেকে হিরুর নৌকার লোক পালানোর জন্য জায়গা পাবে না। নৌকার লোক পালানোর সুযোগ পাবে না।' তিনি আরও বলেন, 'আমরা কাল থেকে স্বতন্ত্রপ্রার্থী কামরুল ভাইয়ের হয়ে মাঠে নামব। কোনো বাধা-বিপত্তি নেই। যতই প্রোপাগান্ডা করুক, গণজাগরণ ফেরাতে পারবে না। মোশারফ ভাই যেভাবে বলবেন, কাল থেকে সেভাবে কাজ করবেন।' পরে সভায় উপস্থিত লোকজন হাসাহাসি শুরু করলে তিনি নিজের বক্তব্য সংশোধন করে বলেন, 'হিরুর নৌকার লোক পালানোর সুযোগ পাবে না।' আজ বুধবার বিকালে মাধবদী পৌর পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত এ মতবিনিময় সভায় জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী কামরুজ্জামান কামরুল, মাধবধী পৌর মেয়র মোশারফ হোসেন মানিক, নরসিংদী পৌর মেয়র আমজাদ হোসেন বাচ্চুসহ আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সিরাজুল ইসলামের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষা ও মানব বিষয়ক সম্পাদক এস এম কাইয়ুম বলেন, 'কাউকে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়ার এখতিয়ার রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত। একজন আওয়ামী লীগ নেতা হয়ে, নৌকার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সমালোচনার দলের সঙ্গে বিদ্রোহ ঘোষণা করার সামিল।' নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম তালেব হোসেন বলেন, 'আমাকে বক্তব্য পাঠানো হয়েছে। আমি সিরাজুল ইসলামের বক্তব্য শুনেছি। তার বক্তব্য নৌকার বিরুদ্ধে, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। আমি তার বক্তব্য সমর্থন করি না। তার বিরুদ্ধে সাংগাঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে অচিরেই।' জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মোহাম্মদ আলী বলেন, 'আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। তার বক্তব্যও আমি শুনিনি। তাই কোনো মতামত দেবো না। দল কী সিদ্ধান্ত নেবে, সেটার অপেক্ষায় আছি।' এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'নৌকার বিরুদ্ধে আমি কোনো বক্তব্য দিইনি।' আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হিরু বলেন, 'সিরাজুল ইসলাম আওয়ামী লীগের পদধারী নেতা। অন্যায় হলে তিনি ব্যক্তির বিরুদ্ধে সমালোচনা করতে পারেন, তার স্বাধীনতা আছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতা হয়ে নৌকার বিরুদ্ধে কথা বলতে পারেন না।' এদিকে সভা করে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ প্রসঙ্গে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম বলেন, 'বিষয়টি এখনও আমাদের নজরে আসেনি। বিষয়টি আমাদের নজরে আসলে অথবা কেউ লিখিত অভিযোগ করলে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।'
নৌকার লোক পালানোর জায়গা পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন নরসিংদীর মাধবদী থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম।
যাত্রাবাড়ীতে বাসে আগুন, যুবক দগ্ধ
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গ্রিন অনাবিল পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে এক যুবক দগ্ধ হয়েছেন। আজ বুধবার রাত ৯টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মাতুয়াইল মেডিকেলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মফিজুল আলম জানান, দগ্ধ যুবকের নাম হাসান জুুবায়ের (২৬)। তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গ্রিন অনাবিল পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে এক যুবক দগ্ধ হয়েছেন।
সিলেটে বাসে আগুন
সিলেট নগরীর কদমতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় রাস্তার পাশে পার্ক করে রাখা একটি বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার রাত সোয়া ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস অগ্নিকাণ্ডের কারণ প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করতে পারেনি, তবে পুলিশের ধারণা দুর্বৃত্তরা বাসটিতে আগুন দিয়েছে। বাসের চালক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে দক্ষিণ সুরমা ফায়ার স্টেশনের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর টিটপ শিকদার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাসটি মৌলভীবাজারের শেরপুর থেকে মাত্র সিলেট টার্মিনালে এসে পৌছানোর পর যাত্রী নামিয়ে বাস চালক ও সহকারীরা নাস্তা করতে যান। তখন খালি বাসটিতে আগুন লাগে।' তিনি বলেন, 'রাত ৮টা ২১ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসে অগ্নিকাণ্ডের কথা জানানো হয়। সঙ্গে সঙ্গে দুটি ফায়ার ইঞ্জিন নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি। আগুনে বাসটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে, সব সিট পুড়েছে এবং সবগুলো কাঁচ ভেঙে গেছে।' তবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ তদন্ত ছাড়া নিশ্চিত করা যাবে না বলে উল্লেখ করেন তিনি। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, 'অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান করা হবে। তবে প্রাথমিকভাবে আমরা সন্দেহ করছি দুর্বৃত্তরা বাসটিতে অগ্নিসংযোগ করেছে।'
সিলেট নগরীর কদমতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় রাস্তার পাশে পার্ক করে রাখা একটি বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় বাসে আগুন
রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকায় বৈশাখী পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের ডিউটি অফিসার রোজিনা আক্তার এ তথ্য জানান। তিনি জানান, সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে বারিধারা ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকায় বৈশাখী পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করুন, জনগণ ক্ষমা করবে না: রিজভী
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ বুধবার এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। রিজভী বলেন, 'গোটা দেশের জনগণ, সব বিরোধী দলগুলোর বিরোধিতা এবং আন্তর্জাতিক মহলের আহ্বান উপেক্ষা করে সরকার একতরফা প্রহসনের নির্বাচন করার অপরিণামদর্শী আত্মঘাতী খেলায় মেতে উঠেছে।' তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনার একগুঁয়েমি দেখে অনুমিত হচ্ছে তিনি দেশ ও জনগণকে ধ্বংস করেই তবে বিদায় নেবেন। যখন দেশের ঘরে ঘরে ক্ষুধার জ্বালায় মরণাপন্ন মানুষ, অন্নের অভাবে কচু-ঘেচু সেদ্ধ খেয়ে প্রাণ বাঁচাচ্ছে, চারদিকে হাহাকার, অর্থনীতি বলে কিছু নেই এমন পরিস্থিতিতে বিরোধী মতের গলা টিপে ঢাক-ঢোল-তবলা নিয়ে আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতির উৎকট উল্লাস চলছে দিকেদিকে। চলছে বিরোধীদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত করার মহোৎসব।' 'জনগণ জানতে চায়, গণভবনের তালিকায় শুধু নির্বাচনের নামে সিলমোহর দেওয়ার জন্য কেন রাষ্ট্রীয় প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা লোপাটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে? দেউলিয়া ও বুভুক্ষু পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে কেন এই ভোটের নামে করা হচ্ছে ভেল্কিবাজি,' প্রশ্ন রাখেন তিনি। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, 'কাকে এমপি ঘোষণা করা হবে, আর কাকে তালিকা থেকে ছেঁটে ফেলা হবে সব কিছুই তো প্রস্তুত আছে। এখনি ঘোষণা দিলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়। যারাই জিতবে তারা সবাই তো প্রধানমন্ত্রীর লোক 'অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন'!' তিনি বলেন, 'এখন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা পঁচাত্তরের মতো শ্লোগান দিচ্ছে 'এক নেতা এক দেশ শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'। এখন আর শুধু একটি শ্লোগান না, এটা শেখ হাসিনা বাস্তবেই করতে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে টাইম ম্যাগাজিন কর্তৃত্বপরায়ণ শেখ হাসিনার রেজিমকে ভয়াবহ বাকশাল ২.০ বলে আখ্যায়িত করেছে।' রিজভী বলেন, 'যারা এই পাতানো সিলমোহরের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন বা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সহযোগিতা করছেন, তাদের আমি বিএনপির পক্ষ থেকে আহ্বান জানাচ্ছি, আপনাদের যদি ন্যূনতম দেশপ্রেম থাকে, বিবেচনাবোধ থাকে তবে ফিরে আসুন। আপনারা মীর জাফরের উত্তরসূরি হবেন না। আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'প্রজাতন্ত্রের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী ভাগ-বাটোয়ারার পাতানো নির্বাচনে কোনো সহযোগিতা করবেন না। ভোটাররা ভোটদান থেকে বিরত থাকুন। যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তারা প্রত্যাহার করুন। না হলে এই অমার্জনীয় অপকর্মের জন্য জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না। ইতিহাসের পাতায় আপনাদের নাম বেইমান-মীরজাফরের পাশে লেখা থাকবে।' রিজভী আরও বলেন, 'নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শেখ হাসিনা হর্স ট্রেডিং শুরু করেছিল, কিন্তু তাতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপির সাচ্চা কাউকে হালুয়া-রুটির লোভে হায়ার করতে পারেনি। দল বিতাড়িত কিছু লোককে টাকার বিনিময়ে ভাগিয়ে নিয়ে আওয়ামী লীগ এখন লোক ভাগানোর দলে পরিণত হয়েছে।' আরও‘তওবা, আস্তাগফিরুল্লাহ’ বিএনপিতে ফিরে যাওয়ার প্রশ্নে শাহজাহান ওমর রুহুল কবির রিজভী বলেন, 'এমপি হওয়ার জন্য জনগণের কাছে নয়, আওয়ামী লুটেরা চক্র ও তাদের দোসররা এখন এমপি হওয়ার জন্য মাফিয়াদের গণভবনের দিকে ছুটছে। ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছে। প্রতিদ্বন্দ্বীরা সবাই হাস্যকরভাবে আকুতি জানাচ্ছেন সংসদে যাওয়ার জন্য। তারা কেউ সরকার গঠনের কথা ভাবছেন না, তারা শুধু সংসদে যেতে চান। তাই তারা শেখ হাসিনার মুখের দিকে তাকিয়ে।' জাতীয় পার্টির মহাসচিবের 'সরকার আশ্বাস দিয়েছে বলেই নির্বাচনে এসেছি' এমন বক্তব্যের উল্লেখ করে রিজভী বলেন, 'কী ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা জাপা মহাসচিবের বক্তব্যে স্পষ্ট। শেখ হাসিনার আশীর্বাদ ছাড়া দেশে কেউ ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার হওয়ার যোগ্যতাও নেই।' 'গত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি' উল্লেখ করে তিনি বলেন, '১২ কোটি ভোটারের কাছে আমাদের আহ্বান আপনারা কারও প্রহসনের নির্বাচন করার স্বার্থ সিদ্ধিতে অংশ নেবেন না। শেখ হাসিনার ক্ষমতার লিপ্সা মেটাতে গিয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী দেশের জন্য কলঙ্ক বয়ে এনেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতি উৎসাহী কর্মকর্তা যারা শেখ হাসিনার ক্ষমতালিপ্সা মেটাতে এভাবে দেশের সম্মান নষ্ট করছেন, তাদের অচিরেই জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।' তিনি আরও বলেন, 'আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, বিএনপি এখন কুয়াশার মধ্যে মিছিল করে। এ কথা শুনে সাধারণ মানুষ চাপা হাসি হেসেছে। সবাই জানে কুয়াশার সঙ্গে কাক বা আঞ্চলিক ভাষায় যকে কাউয়া বলা হয়, তার একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে। কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতার লাইনটি এভাবে বলা যায়, 'হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে, কুয়াশার বুক ভেসে হয়ত একদিন ওবায়দুল কাদের সাহেব আসিবেন আবারও এই কাঁঠাল ছায়ায়।' 'ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, মানবাধিকার দিবসে বিএনপি বিশৃঙ্খলা করতে পারে, এমন গোয়েন্দা তথ্য নাকি তার কাছে আছে। আসলেই ওবায়দুল কাদের সাহেবের সাংবাদিক সম্মেলন যেন চিত্তকর্ষক কমেডি শো এবং তিনি হচ্ছেন যোগ্য হোস্ট। গোয়েন্দা তথ্যের উৎস কি গণভবন। আসন্ন তামাশার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানা কাহিনী ও নাটিকা রচনা করবেন তার আভাস পাওয়া যায় এসব কথায়,' বলেন রুহুল কবির রিজভী। আরওজাতীয় পার্টির সঙ্গে বুধবার বসতে চায় আওয়ামী লীগ: চুন্নু রুহুল কবির রিজভী বলেন, 'এমপি হওয়ার জন্য জনগণের কাছে নয়, আওয়ামী লুটেরা চক্র ও তাদের দোসররা এখন এমপি হওয়ার জন্য মাফিয়াদের গণভবনের দিকে ছুটছে। ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছে। প্রতিদ্বন্দ্বীরা সবাই হাস্যকরভাবে আকুতি জানাচ্ছেন সংসদে যাওয়ার জন্য। তারা কেউ সরকার গঠনের কথা ভাবছেন না, তারা শুধু সংসদে যেতে চান। তাই তারা শেখ হাসিনার মুখের দিকে তাকিয়ে।' জাতীয় পার্টির মহাসচিবের 'সরকার আশ্বাস দিয়েছে বলেই নির্বাচনে এসেছি' এমন বক্তব্যের উল্লেখ করে রিজভী বলেন, 'কী ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা জাপা মহাসচিবের বক্তব্যে স্পষ্ট। শেখ হাসিনার আশীর্বাদ ছাড়া দেশে কেউ ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার হওয়ার যোগ্যতাও নেই।' 'গত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি' উল্লেখ করে তিনি বলেন, '১২ কোটি ভোটারের কাছে আমাদের আহ্বান আপনারা কারও প্রহসনের নির্বাচন করার স্বার্থ সিদ্ধিতে অংশ নেবেন না। শেখ হাসিনার ক্ষমতার লিপ্সা মেটাতে গিয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী দেশের জন্য কলঙ্ক বয়ে এনেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতি উৎসাহী কর্মকর্তা যারা শেখ হাসিনার ক্ষমতালিপ্সা মেটাতে এভাবে দেশের সম্মান নষ্ট করছেন, তাদের অচিরেই জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।' তিনি আরও বলেন, 'আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, বিএনপি এখন কুয়াশার মধ্যে মিছিল করে। এ কথা শুনে সাধারণ মানুষ চাপা হাসি হেসেছে। সবাই জানে কুয়াশার সঙ্গে কাক বা আঞ্চলিক ভাষায় যকে কাউয়া বলা হয়, তার একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে। কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতার লাইনটি এভাবে বলা যায়, 'হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে, কুয়াশার বুক ভেসে হয়ত একদিন ওবায়দুল কাদের সাহেব আসিবেন আবারও এই কাঁঠাল ছায়ায়।' 'ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, মানবাধিকার দিবসে বিএনপি বিশৃঙ্খলা করতে পারে, এমন গোয়েন্দা তথ্য নাকি তার কাছে আছে। আসলেই ওবায়দুল কাদের সাহেবের সাংবাদিক সম্মেলন যেন চিত্তকর্ষক কমেডি শো এবং তিনি হচ্ছেন যোগ্য হোস্ট। গোয়েন্দা তথ্যের উৎস কি গণভবন। আসন্ন তামাশার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানা কাহিনী ও নাটিকা রচনা করবেন তার আভাস পাওয়া যায় এসব কথায়,' বলেন রুহুল কবির রিজভী।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মানিকনগরে একুশে এক্সপ্রেসের ৩ বাসে আগুন
রাজধানীর মানিকনগরে একুশে এক্সপ্রেস পরিবহনের তিনটি বাসে আগুন দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আজ বুধবার বিকেলে মানিকনগর চৌরাস্তায় এ ঘটনা ঘটে বলে ফায়ার সার্ভিস সদরদপ্তরের ডিউটি অফিসার রোজিনা আক্তার জানিয়েছেন। আগুনে দুটি বাস সম্পূর্ণ ও একটি বাস আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। ফায়ার সার্ভিস জানায়, বিকেল ৪টা ৪৮ মিনিটে খবর পেয়ে খিলগাঁও ফায়ার স্টেশনের ২টি ও সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশনের ১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। বিকেল ৫টা ২৬ মিনিটে আগুন নির্বাপণ হয়। তাৎক্ষণিকভাবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
রাজধানীর মানিকনগরে একুশে এক্সপ্রেস পরিবহনের তিনটি বাসে আগুন দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
রাজশাহীতে যুবদলের মিছিলে রিজভী
রাজশাহী মহানগরীতে আজ বুধবার সকালে এক বিক্ষোভ মিছিলে দেখা গেছে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রাজশাহী যুবদলের সদস্য সচিব রেজাউল করিম টুটুল দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, জেলা যুবদল আজ সকাল ৭টায় শহরের তেরখাদিয়া এলাকায় মিছিল বের করে। টুটুল বলেন, 'তিনি (রিজভী) মিছিলের নেতৃত্ব দেন এবং পরে মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।' পরে রিজভী তাদের না জানিয়ে সেখান থেকে চলে যান বলেও উল্লেখ করেন তিনি। মিছিলে অংশ নেওয়া বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, রিজভী তার বক্তব্যে ডিসেম্বরের মধ্যেই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে বিএনপির আন্দোলন জোরদারের কথা বলেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে যাওয়া একটি ভিডিওতে রিজভীকে একটি মিছিলের নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে। মিছিলকারীরা অবরোধের সমর্থনে স্লোগান দেন। তবে রাজশাহীতে রিজভীর উপস্থিতি সম্পর্কে জানেন না স্থানীয় বিএনপি নেতারা। জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি তার সফর সম্পর্কে কিছুই জানতাম না।' তিনি বলেন, 'আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পেছনে লেগে থাকায় বিএনপি নেতারা রিজভীর মতো করেই হঠাৎ করে কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন।' জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী এশা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি তার সফরের কথা পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুনেছি।'
রাজশাহী মহানগরীতে আজ বুধবার সকালে এক বিক্ষোভ মিছিলে দেখা গেছে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
‘তওবা, আস্তাগফিরুল্লাহ’ বিএনপিতে ফিরে যাওয়ার প্রশ্নে শাহজাহান ওমর
বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর নাশকতা মামলায় গত ২৯ নভেম্বর জামিন পেয়ে আওয়ামী লীগের হয়ে মনোনয়নপত্র তোলেন। পরে বিএনপি থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। আজ বুধবার তিনি বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের তোপের মুখে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন। পরে দুপুর দেড়টার দিকে তিনি যান ডিবি কার্যালয়ে। ডিবি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান ওমর। তিনি জানান, সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়ে ডিবি কার্যালয়ে গেছেন প্রতিকার পেতে। শাহজাহান ওমর বলেন, 'আমি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের একজন প্রার্থী। বিভিন্নভাবে আমি সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছি। মানুষজন অকথ্য ভাষায় কথা বলে। অনেক সময় আমাকে না পেয়ে আমার স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ের ফোনে এমনকি আমার জুনিয়রসহ বন্ধুবান্ধবদের ফোনে ফোন করে মানুষজন আজেবাজে কথা বলে। আবার আমি যদি কলব্যাক করি, তাহলে কেটে দেয়। এগুলো ডিবির হারুন সাহেবকে জানাতে আসলাম। আমি তাকে বললাম যে আমি সাইবার বুলিংয়ের শিকার।' আজ সুপ্রিম কোর্টে কী হয়েছিল, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি যখন কোর্টের রুম থেকে গাড়িতে উঠি, তখন ১০-১২ জন উকিল আমাকে পেছন থেকে কিছু বলেছে।' ঝালকাঠিতে তার সভায় অস্ত্র প্রদর্শনের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজাহান ওমর বলেন, 'এটা ভুল বোঝাবুঝি ছিল। আমি যেহেতু অনেকদিন পর এলাকায় গেলাম, যেহেতু আমি বিএনপি করতাম, তাই বিএনপির অনেক লোক আমার সাথে ছিল। আমরা ওখানে সবাই আওয়ামী লীগ হয়ে গেছি। সেখানে আমার লাইসেন্স করা বন্দুক আমার সঙ্গে ছিল। এটা একটা মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়ে গেছে।' তিনি বলেন, 'এটা তেমন কোনো ফর্মাল সভা ছিল না। আমি শুধু বলেছি, আমি আগে বিএনপি করতাম, বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য হয়েছি। এখন আমার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও সাংবিধানিক অধিকার অনুসারে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছি। আপনারা আমাকে কনিষ্ঠ আওয়ামী লীগ সদস্য হিসেবে গ্রহণ করবেন বলে আশা করি। আমার বিএনপির অনুসারীরাও আপনাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করল। সাবেক বিএনপি ও বর্তমান আওয়ামী লীগ সবই আমরা একই দল। আগামী নির্বাচনে সবাই আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করব।' নাশকতা মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজাহান ওমর বলেন, 'একটা মামলা তো হতেই পারে। ২৮ তারিখে বিএনপির সমাবেশের স্টেজে তো আমি ছিলাম, এটা তো অস্বীকার করতে পারব না। আমার জামিন এমনিতেও হতো। আমি গ্রেপ্তার হলাম ৪ নভেম্বর। ৬ তারিখ সুপ্রিম কোর্টে আমি আগাম জামিনের আবেদন করি। এই জামিনের একটা নিয়ম হলো আদালতে উপস্থিত থাকা। নিতাই রায়, জয়নাল আবেদিন, মাহবুবউদ্দিন খোকনের জামিন হলো। তাদের ৩ সপ্তাহের জামিন হলো। আমি উপস্থিত থাকতে পারিনি, আমার জামিন হলো না। পরে আমার যেদিন তারিখ ছিল, সেদিন গেলাম। আমি বললাম আইনজীবী হিসেবে, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এবং রেফারেন্স আছে তিন জনের জামিনের, কেন আমাকে জামিন দেবেন না। আমার আইনজীবী ছিলেন মাসুদ তালুকদার। তিনি বিএনপি করেন।' বিএনপির সঙ্গে বেইমানি করেছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আজ যার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক, কাল তার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো নাও থাকতে পারে। আমি এক রাজনৈতিক দল থেকে অন্য দলে গেলাম। এতে কি বেইমানি হয়ে গেল। বেইমানি তো ধর্মের বিষয়।' আবার বিএনপিতে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না, এমন প্রশ্ন করতেই তিনি বলে ওঠেন, 'তওবা, আস্তাগফিরুল্লাহ, নাউযুবিল্লাহ। এটা কেমন কথা বলেন।'
বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর নাশকতা মামলায় গত ২৯ নভেম্বর জামিন পেয়ে আওয়ামী লীগের হয়ে মনোনয়নপত্র তোলেন। পরে বিএনপি থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
কিংস পার্টি আসবে কোত্থেকে, আমরা কি রাজতন্ত্র চালাচ্ছি: কাদের
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রতিপক্ষ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রাজার পার্টি, প্রজার পার্টি—এসব অভিধায় কারও সম্পর্কে মন্তব্য করা সঠিক না। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এ কথা বলেন। আপনারা তৃণমূল বিএনপি বা সুপ্রিম পার্টি নিয়ে যে স্বস্তির কথা বলছেন, অনেকে কিংস পার্টি বলে তাদের সমালোচনা করছে—এ ব্যাপারে গণমাধ্যমকর্মীরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, 'এখানে কিংস পার্টির কী আছে! আমরা কি রাজতন্ত্র চালাচ্ছি বাংলাদেশে? 'কিংস পার্টি আসবে কোত্থেকে? আমরা কি অস্বাভাবিক সরকার, ওয়ান-ইলেভেনের যে এখানে কিংস পার্টি আসবে! আমরা গণতন্ত্র নিয়ে লড়াই করছি। সংবিধান রক্ষা, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য এই নির্বাচন আমরা করতে চাই। সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ একটা নির্বাচন আমরা জাতিকে উপহার দিতে চাই,' যোগ করেন তিনি। কাদের বলেন, 'আজকে দেখুন, আবার মানবাধিকারের নামে নির্বাচনবিরোধী সব দলের ঐক্য যার; বিএনপি, যে আন্দোলনে তারা ব্যর্থ হয়েছে জনসম্পৃক্ততার অভাবে, সেটাকে এখন অগ্নি সন্ত্রাস দিয়ে, নাশকতা দিয়ে সেই আন্দোলনকে তারা এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। মানবাধিকার দিবসে সারা দেশে একটি বিশৃঙ্খলা তৈরি প্ল্যান নিয়ে তারা এগোচ্ছে।' তিনি আরও বলেন, 'এ জন্য তারা জামায়াতকে তাদের একান্তই পাশে চায়। আসলে বাংলাদেশের বাস্তবতা হচ্ছে যে, আজকে বিএনপি একটা রাজনৈতিক দল; ভুলের রাজনীতি এবং জামায়াতের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠতার সূত্রে তারা যেভাবে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে—এক সময় দেখা যাবে যে, আসল রাজনীতিটা এবং মূল অংশে তাদের যে ধারা আজ চলছে, এই ধারা নেতৃত্ব দিচ্ছে জামায়াত এবং বিএনপি এটা বি-টিম হিসেবে আবির্ভূত হবে।' আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'বিএনপির এখন যে রাজনীতি, জামায়াতের ক্ষমতার রাজনীতিতে তারা নিজেদের আরও পিছিয়ে দিয়েছে ভুলের রাজনীতি করে এবং একটা পর্যায়ে তারাই আসলে জামায়াতের বি-টিমে পরিণত হবে। এ আশঙ্কা আমরা করছি।' আগামী ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবসে বিএনপি নাশকতার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে—এটা কেন মনে হচ্ছে জানতে চাইলে কাদের বলেন, 'আমরা খোঁজ-খবর নিয়েই কথা বলি। সরকারি দল হিসেবে আমাদের জানার স্কোপটা বেশি। বিভিন্ন সূত্র আছে, গোয়েন্দা সূত্রসহ। আমরা ইনফরমেশন পাচ্ছি এবং ইনফরমেশন আগেও তাদের সম্পর্কে যা পেয়েছি, কোনোটাই বাস্তবে ভুল প্রমাণিত হয়নি।' নির্বাচন কমিশন অনুমতি না দেওয়ায় ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবসে আওয়ামী লীগ ইনডোর কর্মসূচি পালন করবে বলেও এ সময় জানান কাদের।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রতিপক্ষ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রাজার পার্টি, প্রজার পার্টি—এসব অভিধায় কারও সম্পর্কে মন্তব্য করা সঠিক না।
বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের তোপের মুখে হাইকোর্ট ছাড়লেন শাহজাহান ওমর, গেলেন ডিবিতে
বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের তোপের মুখে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেছেন ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর। আজ বুধবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ ত্যাগ করার পর দুপুর দেড়টার দিকে তিনি যান ডিবি কার্যালয়ে। বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর গত ২৯ নভেম্বর নাশকতা মামলা থেকে জামিন পেয়ে আওয়ামী লীগের হয়ে মনোনয়নপত্র তোলেন। পরে বিএনপি থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। আজ বুধবার তিনি হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে গেলে বিএনপিপন্ত্রী আইনজীবীরা তার বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। পরে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে যান শাহজাহান ওমর। এর আগে, সেখানে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি শাহজাহান ওমর। প্রধান বিচারপতির ব্যক্তিগত সচিব হাসান আরিফুল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সিনিয়র আইনজীবী মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর সকাল ১১টার দিকে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে তার কার্যালয়ে দেখা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রধান বিচারপতি আদালতের কাজে ব্যস্ত থাকায় দেখা করতে পারেননি।' আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহজাহান ওমর আজ পুলিশি নিরাপত্তায় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে যান। সুপ্রিম কোর্ট থেকে বের হয়ে দুপুর দেড়টার দিকে ডিবি কার্যালয়ে যান শাহজাহান ওমর। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নাশকতার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় কিছুদিন আগে ডিবি পুলিশ তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিল। আজ শাহজাহান ওমর কেন ডিবি কার্যালয়ে গেছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবিপ্রধান হারুন সাংবাদিকদের বলেন, 'সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়ে গোয়েন্দা পুলিশের সাহায্য নিতে তিনি ডিবি কার্যালয়ে এসেছেন।' এসব বিষয়ে মন্তব্য জানতে শাহজাহান ওমরকে ফোন করা হলেও, তিনি ফোন ধরেননি।
বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের তোপের মুখে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেছেন ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর। আজ বুধবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ ত্যাগ করার পর দুপুর দেড়টার দিকে তিনি যান ডিবি কার্যালয়ে।
আপিলে প্রার্থিতা ফিরে না পেলে হাইকোর্টে যাব: হিরো আলম
মনোনয়নপত্রের বৈধতা ফিরে পেতে আপিল আবেদন করেছেন আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। তিনি বলেছেন, আপিলে মনোনয়ন ফিরে না পেলে হাইকোর্টে যাবেন। আজ বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তিনি আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে যান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন হিরো আলম। ফরম যথাযথভাবে পূরণ না করার কারণে কমিশন তার মনোনয়ন অবৈধ ঘোষণা করে। গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে আলম বলেন, 'এখানে প্রার্থিতা যদি ফিরে না পাই, আপনারা সবাই জানেন, সর্বোচ্চ দৌড় হাইকোর্ট পর্যন্ত থাকে—আমরা হাইকোর্টে যাব। আমি জানি এখান থেকে পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ আমার যে ভুলটা, ছোটখাটো ভুল। এটা ইচ্ছা করলে তারা এখান থেকে দিতে পারে।' নির্বাচনের পরিবেশ কেমন দেখছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'নির্বাচনের পরিবেশ এখন পর্যন্ত ভালো। নির্বাচন এবার সুষ্ঠু হবে কি না তা জানি না। কারণ আমি যেখানে নির্বাচন করছি সেখানে সবগুলো দলই আছে এবার; আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, আরও যেসব দল—সবগুলো দলই অংশগ্রহণ করছে। 'আপনারা জানেন, আমার তো প্রতিবারই আওয়ামী লীগের লোকের সঙ্গে মারামারি হয়। এবারও আওয়ামী লীগ ওখানে আছে। এবারও মারামারি হবে না কি আমি জানি না সঠিক। প্রতিবারই তারা আমার এজেন্টদের বের করে দেয়। ভোট সুষ্ঠু হলেও তারা ফলাফল সুষ্ঠু ঘোষণা করে না,' বলেন তিনি। আলম বলেন, 'আমি বলেছিলাম নির্বাচন আর করব না। এবার নির্বাচন করার কোনো ইচ্ছাই ছিল না। এলাকার লোক সবাই বলছে, না, নির্বাচন করেন। আপনি এত সংগ্রাম-লড়াই করে এতদূর এসেছেন, হাল কেন ছাড়বেন! জনগণের সমর্থনে, সবার সমর্থনে নির্বাচনে আসা। এখন ভোট কতটা সুষ্ঠু হবে আমি জানি না, নির্বাচনের দিন দেখার পালা। প্রতিবারই আমরা বলি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিন্তু ভোটের দিন আমরা পরিবেশ উল্টো দেখি।' এই নির্বাচনে আবারও সংঘর্ষের আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'প্রতিবারই, আমি যে কয়বার নির্বাচন করেছি, সেই কয়বারই আমার সঙ্গে মারামারি হয়েছে। এবার যে হবে না...কারণ জনগণ তো আমাকে ভালোবাসে, ভোট দেয়। এখন ভোট যদি আমাকে দেয়, আর প্রার্থীদের যদি না দেয় ওরা তো জোর করে ছিনিয়ে নিতে চাইবে। এবারও হয়তো ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে।' তিনি বলেন, 'সুষ্ঠু একটি নির্বাচন হবে সেই আশায় আবারও আমরা নির্বাচনে এসেছি। বাকিটা নির্বাচনের মাঠে আপনারা সবাই দেখবেন।' হিরো আলম এবার বাংলাদেশ কংগ্রেস জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর আগে চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে নির্বাচন কমিশনে আপিল করে প্রার্থিতা ফেরত না পেয়ে তিনি হাইকোর্টে রিট করেছিলেন। হাইকোর্টের আদেশে নির্বাচনে ফিরে আসেন হিরো আলম। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে বগুড়া-৪ আসনে একতারা প্রতীকে ৮৩৪ ভোট কম পেয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত জাসদের প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিমের কাছে পরাজিত হন আলম।
মনোনয়নপত্রের বৈধতা ফিরে পেতে আপিল আবেদন করেছেন আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম।
আশুলিয়ায় ইতিহাস পরিবহনের বাসে আগুন
সাভারের আশুলিয়ার একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে ইতিহাস পরিবহনের একটি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, সকালে ইতিহাস পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব ১৫-৩২৯৫) বাসটি চন্দ্রা থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। বাড়ইপাড়ায় পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন আগুন নিভিয়ে ফেলে। আগুন দ্রুত নিভিয়ে ফেলায় ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলক কম হয়েছে। কেবল পেছন দিকের পাঁচটি সিট পুড়ে গেছে। আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাদরুজ জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যাত্রীবেশে বাসে উঠে কে বা কারা আগুন লাগিয়েছে। আমরা কাজ করছি, এ ঘটনায় জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে। বাসটি এই মুহূর্তে বাড়ইপাড়ায় নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে।'
সাভারের আশুলিয়ার একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
খিলগাঁওয়ে অগ্রণী ব্যাংকের স্টাফ বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা
রাজধানীর খিলগাঁওয়ে অগ্রণী ব্যাংকের স্টাফ বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ফায়ার সার্ভিস জানায়, আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে খিলগাঁওয়ের তালতলায় বিআরটিসির বাসটিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেলের ডেপুটি অ্যাসিটেন্ট ডিরেক্টর শাহজাহান সিকদার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ প্রটেকশনে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে স্থানীয়ভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
রাজধানীর খিলগাঁওয়ে অগ্রণী ব্যাংকের স্টাফ বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
২ বছরে তৈমুরের সম্পদ বেড়েছে ৮ গুণ, তার স্ত্রী ফারজানার ৬৬ গুণ
'কিংস পার্টি' খ্যাত তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার ও তার স্ত্রী ফারজানা হালিমার সম্পদের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে তৈমুরের সম্পদ বেড়েছে আট গুণ। অন্যদিকে ফারজানার সম্পদ বেড়েছে ৬৬ গুণ। ফারজানা পেশায় গৃহিনী। গত বছর দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হন তৈমুর। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেন। তৃণমূল বিএনপি থেকে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে সংসদ সদস্য প্রার্থী হয়েছেন এই রাজনীতিক। সিটি নির্বাচনে অংশ নিতে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা অনুসারে, তৈমুরের কেবল অস্থাবর সম্পদ ছিল নগদ পাঁচ লাখ টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে ৪৩ লাখ ২০ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আছে ৩৬ লাখ ৬৮ হাজার ৪৯৮ টাকা এবং নগদ অর্থ ছয় লাখ ৫১ হাজার ৫০২ টাকা। দুই বছর আগে ফারজানার কেবল দুই লাখ টাকা নগদ অর্থ ছিল। তার নগদ অর্থের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩ লাখ ৫০ হাজার ৪৩৬ টাকা। এছাড়া, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আছে ৬০ লাখ টাকা। হালনাগাদ তথ্য অনুসারে, তার মোট এক কোটি ৩২ লাখ ৫০ হাজার ৩৭২ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে, যা পূর্বের তুলনায় ৬৬ গুণ বেশি। এর বাইরে একটি মাইক্রোবাস কিনেছেন তিনি, যার মূল্য যোগ করা হয়নি হলফনামায়। যোগাযোগ করা হলে তৈমুর আলম খন্দকার দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তাঁর স্ত্রী একজন গৃহিনী। 'আমার দুই কন্যা বিদেশে থাকে এবং আমার স্ত্রীর বেশিরভাগ আত্মীয়-স্বজন বিদেশে থাকেন। তারাই টাকা পাঠান,' আয়ের উৎস প্রসঙ্গে বলেন তৈমুর। অস্থাবর সম্পদের তালিকায় তৈমুর ও তার স্ত্রীর ইলেকট্রনিক সামগ্রী এবং আসবাবপত্র রয়েছে, তবে তার মূল্য উল্লেখ করা হয়নি। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের (আপিল বিভাগ) এই আইনজীবী তার ব্যবসা ও পেশার বিবরণীতে 'তৈমুর আলম খন্দকার অ্যাসোসিয়েটস' নামে একটি ল' ফার্ম রয়েছে উল্লেখ করেছেন। এছাড়া তিনি বই লেখেন এবং তার লেখা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশিত হয়। বাড়ি ভাড়া, পেশা ও আমানতের বিপরীতে সুদ হিসেবে এই প্রার্থীর বার্ষিক আয় বর্তমানে বেড়ে ১২ লাখ ১৯ হাজার ২৪৮ টাকা হয়েছে, যা দুই বছর আগে ছিল আট লাখ এক হাজার ৬৪১ টাকা। হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে, তার কোনো ছেলে নেই। দুই মেয়ে আছে, যারা বিদেশে (আমেরিকা ও লন্ডন) থাকেন। ২০১৮ ও ২০২১ সালের হলফনামা অনুসারে, তার ওপর নির্ভরশীলদের আয় ছিল শূন্য। তবে এবার তিনি তার নির্ভরশীলদের আয় দেখিয়েছেন আট লাখ ৭৫ হাজার ৫৩ টাকা। তৈমুরের স্থাবর সম্পদের তালিকায় রয়েছে, রাজউকের একটি পাঁচ কাঠা প্লট এবং ২৭৬ বর্গমিটারের একটি নির্মাণাধীন বাড়ি। দুই বছর আগে যৌথ মালিকানার ২০০ শতাংশ কৃষি জমিতে নিজের ২২ দশমিক ২২ শতাংশ এবং আরও ৩০ শতাংশ জমিতে ২২ দশমিক ২২ শতাংশ মালিকানা থাকলেও তা এবার দেখাননি। এ ব্যাপারে তৈমুর বলেন, 'আমি এই জমিগুলো বিক্রি করে দিয়েছি।' তার স্ত্রীর নামে বর্তমানে রাজধানীর তোপখানা রোডে ৭৪ দশমিক ৩৪ বর্গমিটার স্পেস রয়েছে। আগে তার ৩১৪ বর্গমিটারের একটি ফ্ল্যাট ছিল। তৈমুর দুই বছরে ১১ ভরি সোনার অলঙ্কার উপহার হিসেবে পেয়েছেন। আগে এর পরিমাণ ছিল পাঁচ ভরি। তার স্ত্রীর কাছে আগের মতোই এখন ১২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে। হলফনামায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, তৈমুর আলম ও তার ওপর নির্ভরশীলদের কোনো ঋণ নেই। তার বিরুদ্ধে ১৯৯৭ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত অন্তত ৩০টি মামলা রয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি মামলা বিচারাধীন, বাকিগুলোতে তিনি খালাস বা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।
'কিংস পার্টি' খ্যাত তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার ও তার স্ত্রী ফারজানা হালিমার সম্পদের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
জাতীয় পার্টির সঙ্গে বুধবার বসতে চায় আওয়ামী লীগ: চুন্নু
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আগামীকাল জাতীয় পার্টির সঙ্গে বসতে চেয়েছে আওয়ামী লীগ। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগের একজন নেতা আমাকে ফোন করেছিলেন। বলেছেন, নির্বাচনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য তারা আমাদের সঙ্গে বসতে চান।' তবে সেই আওয়ামী লীগ নেতার পরিচয় প্রকাশ করেননি তিনি। চুন্নু বলেন, 'আমরা আজ রাতেই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করব এবং আওয়ামী লীগকে আমাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবো।'
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আগামীকাল জাতীয় পার্টির সঙ্গে বসতে চেয়েছে আওয়ামী লীগ।
জোটবদ্ধ নির্বাচনে এবার দ্বিগুণ আসন চায় ১৪ দলের শরিকরা
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ১৪ দলীয় জোট আছে এবং জোট একসঙ্গে নির্বাচন করবে। তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন, আসন ভাগাভাগির বিষয়টি সম্মানজনকভাবে নিষ্পত্তি হবে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর ইস্কাটনের বাসভবনে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন। ওই বৈঠকে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন উপস্থিত ছিলেন। ইনু বলেন, 'জননেত্রী শেখ হাসিনার ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠক এবং রাতের খাওয়া খাওয়ার মধ্য দিয়ে এই বার্তা দেশবাসীকে পরিষ্কারভাবে বলেছেন যে, জোট আছে, জোট একসঙ্গে নির্বাচন করবে। সেদিক থেকে আসন ভাগাভাগির বিষয়টা সম্মানজনকভাবে আমরা নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হবো এবং জোটের ভিত্তিতেই নির্বাচন করতে আমরা মাঠে নামব।' আপনারা যতগুলো আসন আশা করছেন, সে ব্যাপারে কতটা আশাবাদী—জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের ইনু বলেন, 'যে কোনো লেনদেনে দর কষাকষি হবে, মন কষাকষি হবে কিন্তু যদি বন্ধুদের মধ্যে দর কষাকষি-মন কষাকষি হয়, সে বিচারে হাসিমুখে উঠে যাব।' আসন বিন্যাস প্রসঙ্গে ইনু আরও বলেন, 'সব সময় আমরা যার যার দলের প্রার্থী দেই। তারপর আমরা সমন্বয় সাধন করি। সুতরাং যেখানে জোটের প্রার্থী আসবে, সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেবে। 'এই মুহূর্তে আমাদের ১৪ দলের ১০ জন সংসদ সদস্য আছেন। আমরা আশা করছি ২০ জন করতে। সেটা আমরা চেষ্টা করব। বাকি শেখ হাসিনা, তার দল সব কিছু মিলিয়ে উনি বিবেচনা করবেন,' বলেন তিনি। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'স্বতন্ত্র প্রার্থী সম্পর্কে কী কৌশল গ্রহণ করা হবে সেটা শেখ হাসিনাকে আমরা বিবেচনা করতে বলেছি। এই ব্যাপারে আরও সময় আছে, আলোচনা করে দেখব আমরা।' জোটের প্রার্থী সবাই নৌকা মার্কায় নির্বাচন করবে বলেও এ সময় জানান জাসদ সভাপতি। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে আপনাদের লড়তে হবে। কারণ তাদের বসিয়ে দিলে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হবে। সে ক্ষেত্রে আপনারা কতটুকু প্রস্তুত—জানতে চাইলে ইনু বলেন, 'কেউ প্রত্যাহার করে নিলে নির্বাচনের আচরণবিধি ভঙ্গ হয় না। সুতরাং ওটা কোনো সমস্যা না। প্রত্যাহার করার জন্য যার যার দল সেই প্রার্থীকে অনুরোধ করতে পারে, নির্দেশ দিতে পারে। সুতরাং এ ব্যাপারে আমি মনে করি না মনোমালিন্য কিছু হবে। 'এটা কৌশলগত সিদ্ধান্ত। সেই সিদ্ধান্ত কীভাবে কার্যকরী করবে; শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে এবং তারপর আমরা বুঝবো, প্রত্যেক আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী কীভাবে ভূমিকা রাখছে,' যোগ করেন তিনি। শরিকদের পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে কোনো দাবি জানানো হয়েছে কি না প্রশ্ন করা হলে ইনু বলেন, 'আমরা মনে করেছি যে, আওয়ামী লীগের নামকরা নেতারা...জোটের প্রার্থীর এখানে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়াই করলে সেটা আওয়ামী লীগ বনাম সেই দলের হয়ে যায়। এটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। আমরা বিবেচনা করার কথা বলেছি।' সর্বনিম্ন কয়টি আসন হলে আপনারা জোটে যাবেন—জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এটা আদর্শিক জোট। সুতরাং এই জোটে সর্বনিম্ন-সর্বোচ্চ; এই মাত্রার ভিত্তিতে জোটটাকে আমরা মাপছি না।' নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি প্রসঙ্গে ইনু বলেন, 'যেহেতু এখন পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত চক্রের আন্দোলনের নামে নাশকতা আছে, তা বাংলাদেশের গ্রামে কোনো ছাপ ফেলেনি। সুতরাং পরিবেশ শান্তিপূর্ণ এবং নির্ভয় অবস্থা বিরাজ করছে। এই অবস্থায় বিএনপি থাকুক অথবা না থাকুক, যে ভোটই হোক না কেন, সেই ভোটে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকলে জনগণের উপস্থিতি, ভোটার উপস্থিতি অনেকাংশে বেশি হবে।' আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, এটি আদর্শিক জোট। এই জোট টিকে থাকবে এবং জোটের মাধ্যমে নির্বাচন হবে। তবে উইনেবল ক্যান্ডিডেটকে বাদ দিয়ে জোটকে ছাড় দেবে এই নীতিতে আওয়ামী লীগ নেই। আপনারা তার এই নীতিকে কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে জাসদ সভাপতি গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, 'এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য নেই। নির্বাচনে কে উইনেবল আর কে উইনেবল না এটা কোনো নেতা-নেত্রী আগে থেকে বলে দিতে পারে না। তাই যদি হতো তাহলে ক্ষমতায় যারা বারবার গেছে তাদের প্রার্থীরা পরাজিত হতেন না।'
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ১৪ দলীয় জোট আছে এবং জোট একসঙ্গে নির্বাচন করবে।
জাপার সঙ্গে আলোচনার পরে ১৪ দলের আসন বিন্যাসের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত: আমু
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির (জাপা) সঙ্গে আলোচনার পরে শরিকদের আসন বণ্টনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু। এ জন্য আগামী ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলেও জানান তিনি। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইস্কাটনের বাসায় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। আমির হোসেন আমু বলেন, 'আমরা সব সময় নির্বাচন-আন্দোলন একসঙ্গে করি। এবারও বারবার আমরা বলেছি, আমাদের নির্বাচন-আন্দোলন সবই একসঙ্গে হবে এবং নির্বাচন আমরা ১৪ দলীয় জোটগতভাবেই করব। সেই সিদ্ধান্ত আমাদের অটুট রয়েছে। সে ক্ষেত্রে উনাদের আসনের ব্যাপারে কোথায় কী করা যায়, যেহেতু এবার জিনিসটা অনেক কমপ্লিকেটেড; অনেক রকম ব্যাপার-স্যাপার, সেখানে কীভাবে আসন বিন্যাস করা যায় সেগুলো একটু যার যার মতো করে বলে—সেভাবে আমরা আলোচনা করব। আলোচনা করে নেত্রীকে জানাবো। 'কালকে কিছু জানানো হয়েছে, আলোচনা হয়েছে। আজকে আবার মেনন সাহেব, ইনু সাহেবরা এসেছেন, আলোচনা করেছেন। আমি সেগুলো নিয়ে নেত্রীর সঙ্গে আলাপ করব। আলাপ করার পর একটা সিদ্ধান্তে আমরা আসতে পারব,' বলেন তিনি। জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টি বলছে, গতবার তাদের ১০ জন এমপি ছিল, এবার তারা বেশি চান। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, প্রার্থী ইলেকটেবল না হলে ছাড়া দেওয়া হবে না—এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'উনাদের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে অব দ্য রেকর্ড। সেটা অব দ্য রেকর্ডই থাকবে।' তিনি বলেন, 'জোটের আসন বিন্যাস ও চূড়ান্ত প্রার্থীর বিষয়ে জানতে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আসন বিন্যাসের ঘোষণা আগে যাবে। জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা হবে, তাদের আসন বিন্যাস হবে।' এবার নির্বাচনের থেকে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ নির্বাচন পরবর্তী অবস্থা সামাল দেওয়া। জামায়াত-বিএনপি জোটের রাজনীতি প্রতিহত করা এবং অর্থনৈতিক চাপ আসতে পারে—গণমাধ্যমকর্মীরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আমু বলেন, 'একসঙ্গে সামাল দেওয়া, যুদ্ধ করা; ১৪ দল পরীক্ষিত। এটা শুধু আসন বিন্যাসের ওপর নির্ভর করে না। আমরা একটি রাজনৈতিক আদর্শিক জোট। এটা ভাগাভাগির জোট না।' তিনি বলেন, '২০০১ সাল থেকে আমরা যুদ্ধ করে আসছি। ২০০৬ সালে যুদ্ধ করেছি। প্রত্যেকবারই আমাদের যুদ্ধ হয়। আসন বিন্যাস; কে কী পেল এটা বড় কথা না। কথা হলো আমরা একটি আদর্শিক জোট হিসেবে কাজ করছি।' কবে নাগাদ আসন বিন্যাস চূড়ান্ত হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'জাতীয় পার্টির সঙ্গে হয়তো কালকে আলাপ হবে। তারপর একটা পর্যায়ে যেতে পারে। কিছু কনফ্লিক্ট হতে পারে। সেগুলো দেখতে হবে জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগ, ১৪ দলের কোনো আসনে কনফ্লিক্ট হয় কি না? সেটা অ্যাডজাস্টমেন্টের ব্যাপার থাকতে পারে।'
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির (জাপা) সঙ্গে আলোচনার পরে শরিকদের আসন বণ্টনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু।
নেতৃত্ব হারানোর ভয়ে নির্বাচন চান না তারেক জিয়া: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বিএনপির নেতা তারেক জিয়া সাজাপ্রাপ্ত, খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত; তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না। বিএনপি যদি নির্বাচনে জিতেও, তারেক জিয়া ও খালেদা জিয়া নেতা থাকতে পারবেন না। নেতৃত্ব চলে যাবে দলের অন্যদের কাছে। এ কারণে, নেতৃত্ব হারানোর ভয়ে তারেক জিয়া কিছুতেই চান না নির্বাচন হোক, বিএনপি নির্বাচনে আসুক। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস উপলক্ষে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, আমরা তাদের বারবার বলেছি, আপনারা নির্বাচনে আসেন। অনেক চেষ্টা করেছি নির্বাচনে আনার জন্য কিন্তু বিএনপি আসেনি। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হচ্ছে। এটিকে বানচাল করার জন্য আবারও সহিংসতা ও বর্বরতার পথ বেছে নিয়েছে বিএনপি। তারা ভুল পথে রয়েছে। নির্বাচন বর্জনের মাধ্যমে তারা আরও জনবিচ্ছিন্ন দলে পরিণত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্জিত সাফল্যের কথা শুনে সবাই অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, 'যেখানে যাই, কথা বলি সারা পৃথিবীর মানুষই আমাদের প্রশংসা করে। সবাই আমাদের কথা শুনতে চায়। বাংলাদেশের সফলতার কথা যখন আমরা বলি, সবাই অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে। তারা বিস্ময় প্রকাশ করে, কীভাবে বাংলাদেশের এতো সাফল্য।' এবারের বিশ্ব মৃত্তিকা দিবসের প্রতিপাদ্য হলো 'মাটি ও পানি: জীবনের উৎস'। বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করে মন্ত্রী বলেন, জমি কমছে, পানির উৎসও কমে যাচ্ছে। মাটির গুণাগুণ হ্রাস পাচ্ছে। বর্ধিত জনসংখ্যার খাবার জোগাড় করা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। মানুষ আগে খাবার পেতো না, ভাত পেতো না। দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছে বারবার। ২০০৪-৫ সালে উত্তরাঞ্চলে মানুষের হাড্ডিসার চেহারা দেখেছি। এখন আর সেই অবস্থা নেই। এখন খাদ্যাভাব নেই, খাদ্যের কষ্ট আর নেই।
কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বিএনপির নেতা তারেক জিয়া সাজাপ্রাপ্ত, খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত; তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না। বিএনপি যদি নির্বাচনে জিতেও, তারেক জিয়া ও খালেদা জিয়া নেতা থাকতে পারবেন না। নেতৃত্ব চলে যাবে দলের অন্যদের কাছে। এ কারণে, নেতৃত্ব হারানোর ভয়ে তারেক জিয়া কিছুতেই চান না নির্বাচন হোক, বিএনপি নির্বাচনে আসুক।
‘কাদের সাহেব ঠিকই বলেছেন, এটা ভাগাভাগি ও ভাগিয়ে নেওয়ার নির্বাচন’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশে একটি ভাগাভাগি ও ভাগিয়ে নেওয়ার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রিজভী এ মন্তব্য করেছেন। আজ মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপির সিনিয়র নেতা রিজভী বলেন, 'আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন যে দুয়েকদিনের মধ্যে তাদের আসন ভাগাভাগি শেষ হবে। আসলে এটা তো ভাগাভাগির নির্বাচন। তারা নেতাদের ভাগিয়ে নিয়ে আসছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে। আর তাদের তথাকথিত জোটের মনঃক্ষুণ্ণ কিছু নেতাদের হালুয়া-রুটির অংশ দিচ্ছেন। 'তারা একটি নির্বাচনী ঘোষণা দেবেন ৭ জানুয়ারি, পাঠ করবে নির্বাচন কমিশন সেটারই প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন, এটাই বলার চেষ্টা করেছেন ওবায়দুল কাদের সাহেব। এখানে জনসাধারণ কোনো ফ্যাক্টর না, ফ্যাক্টর শেখ হাসিনার ইচ্ছা,' যোগ করেন তিনি। রিজভী বলেন, 'তারা বলছেন দেশে বিদেশে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, কারা করছে? দেড় দশক ধরে ক্ষমতায় বসে আছেন, আর বলছেন ষড়যন্ত্র হচ্ছে।' সরকার নির্বাচন করতে মরিয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'ক্ষমতা ধরে রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কী হবে, দেশ কোথায় যাচ্ছে, এর কোনো খেয়াল সরকার রাখতে চায় না।' তিনি বলেন, 'নির্বাচন করতে গিয়ে দেশকে কী পরিমাণ খেসারত দিতে হচ্ছে ও হবে, তার কোনো ধারণাই নেই এই সরকারের। তারা মনে করছে যে আমরা যে কোনোভাবেই এই বৈতরণী পার হয়ে যাব। কিন্তু সরকার, নির্বাচন কমিশন কেউ ছাড় পাবে না। জনগণের আদালতে তাদের প্রত্যেককে জবাব দিতে হবে।' সংবাদ ব্রিফিংয়ে রুহুল কবির রিজভী জনগণের প্রতি আগামী ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ সফল করার আহ্বান জানান।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশে একটি ভাগাভাগি ও ভাগিয়ে নেওয়ার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
ইসি আমাদের আশ্বস্ত করেছে এইবার নির্বাচন ভালো হবে: জাপা মহাসচিব
দেশে আওয়ামী লীগের পক্ষের ভোটের চেয়ে বিপক্ষের ভোট অনেক বেশি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, এদেশে ভোটের হিসাবে বিভিন্ন সময় দেখা যায়, অ্যান্টি-আওয়ামী লীগ ভোট বেশি। অ্যান্টি-আওয়ামী লীগ ভোট আওয়ামী লীগের চেয়ে বেশি। আওয়ামী লীগের পক্ষের ভোটের চেয়ে বিপক্ষের ভোট অনেক বেশি। বিএনপি না এলেও নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন অবশ্যই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে। ভোটার কেন্দ্রে আসতে পারলে আমরা ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারব। ২০০১ সালে আমার আসনে দেখেছি, আওয়ামী লীগের চেয়ে অ্যান্টি-আওয়ামী লীগ ভোট ডাবল। বিএনপি কেন নেই, সেটা তো আপনারা জানেনই। তাদের কিছু দাবি-দাওয়া আছে। এর সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। বিএনপি তাদের টেকনিকে চলে, জাতীয় পার্টি তার নিজস্ব কৌশলে চলে। এজন্য আমরা ভোটে এসেছি। ভোটের পরিবেশ নিয়ে আমাদের দ্বন্দ্ব ছিল। নির্বাচন কমিশন (ইসি) আমাদের জোরালভাবে আশ্বস্ত করেছে। সরকার বলছে, তারাও একটা পরিবেশ করার চেষ্টা করবে যাতে ভোটাররা কেন্দ্রে আসে। সাধারণ মানুষ যদি কেন্দ্রে আসার সুযোগ পায়, আমার মনে হয় আমরা আওয়ামী লীগের চেয়ে ভালো করব। ভোটের পরিবেশ প্রসঙ্গে জাপা মহাসচিব বলেন, ইসি আমাদের সর্বোচ্চ আশ্বস্ত করেছে৷ আমাদের যে দাবি, ভোটাররা যাতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসতে পারে, আসার উৎসাহ পায়, সেরকম একটা পরিবেশ ও ভোটাধিকার যাতে প্রয়োগ করতে পারে, তার পরিবেশ। ইসি আমাদের আশ্বস্ত করেছে। ইসিকে সহযোগিতা করার সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব সরকারের। তারাও আমাদের আশ্বস্ত করেছে যে, ভালো পরিবেশ হবে। সেই ভালো পরিবেশে আশ্বস্ত হয়ে বা আশ্বাস পেয়ে আমরা নির্বাচনের কাজ শুরু করেছি। ১৮ ডিসেম্বরের পর মাঠে যাব, তখন বুঝব অবস্থা কী। তিনি আরও বলেন, আচরণবিধি অনুযায়ী এখন কোনো প্রার্থীর মাঠে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমরা নির্বাচনের প্রাথমিক কাজগুলো সারছি। মনোনয়নপত্র দাখিল, অনেকেরটা বাতিল হয়েছে। এসব জিনিস আমরা মনিটর করছি। আমরা নির্বাচনের পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝব প্রতীক বরাদ্দের পর। এর আগে কোনো প্রার্থীর ভোট চাওয়া বা প্রচার করার কোনো সুযোগ নেই। ফিল্ডে গিয়ে যদি জনগণের সঙ্গে বসে কথা বলা না যায়, তাহলে বাস্তবভাবে নির্বাচনে কী অবস্থা, সেটা এখন বলা মুশকিল। নির্বাচনের কী অবস্থা, মাঠের কী অবস্থা, ১৮ ডিসেম্বরের পরে হয়তো বলতে পারব। মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমরা মনোনয়ন দিয়েছিলাম ২৯৪ জনকে। মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন ২৮৮ জন। তাদের মধ্যে নয়জনের প্রার্থিতা বাতিল হয়। আর পাঁচ বা ছয়জন নানান কারণে দাখিল করতে পারে নাই। এখন ২৭২ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ আছে। যাদের বাতিল হয়েছে তারা আপিলে যাচ্ছেন। 'ইসি আমাদের আশ্বস্ত করেছে, এইবার নির্বাচন ভালো হবে। দেখি তারা কী করেন', যোগ করেন তিনি।
দেশে আওয়ামী লীগের পক্ষের ভোটের চেয়ে বিপক্ষের ভোট অনেক বেশি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
১৪ দলের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির সিদ্ধান্ত আজকালের মধ্যে: কাদের
১৪ দলের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির বিষয়ে সিদ্ধান্ত আজকালের মধ্যে চূড়ান্ত হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আজ মঙ্গলবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। ১৪ দলের সঙ্গে গতকালের বৈঠক বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, মূলত দলীয় জোটের চেয়ারম্যানের বক্তব্যটাই তারা শুনতে আগ্রহী ছিলেন। তার কাছে অনেক বিষয়ই, জাতীয়-আন্তর্জাতিক, তারপরে ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি—এসব বিষয় নিয়ে তাদেরও জানার আগ্রহ ছিল যে, জোটের চেয়ারম্যান ও আমাদের প্রধানমন্ত্রী কী ভাবছেন। বাংলাদেশ নিয়ে বাইরে একটা খেলা আছে। কাজেই এটা নিশ্চয়ই প্রত্যেকের একটা স্বার্থ আছে। বাংলাদেশকে ঘিরে ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী দেশগুলো এখানে, তাদের মধ্যেও একটা কোঅর্ডিনেশন আছে। 'এই বিষয়গুলো সময়ে সময়ে তারা আলাপ-আলোচনা করে এটাকে ব্যালেন্সড নীতি গ্রহণ করার ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ (মত) পোষণ করেন। নেত্রী এখানে বাংলাদেশকে নিয়ে বাইরের স্বার্থের যে খেলা, এটা আজ নয়, বহুদিন আগে থেকেই আছে এবং এদেশে পঁচাত্তর ঘটে গেছে, তেসরা নভেম্বরও হয়েছে। বারে বারে তো হামলা আসছে। আমাদের মূল কথা হচ্ছে আমরা সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করব। সে ব্যাপারে আমরা সবাই একতম।' কয়েক জায়গায় আওয়ামী লীগ মনোনীতদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রার্থিতা বাতিল গণতান্ত্রিক নির্বাচনে কি নতুন কোনো দৃষ্টান্ত? প্রার্থিতা বাতিল তো প্রায় ইলেকশনেই এখানে-ওখানে দু-চারটা হয়। তো তাতে কী ক্ষতি হবে? প্রার্থিতা যদি যৌক্তিকভাবে নির্বাচন কমিশন বাতিল করে, তা আমরা তো সেটা নিয়ে কোনো আপত্তি করতে যাব না। যেসব আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীতদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে, সেসব আসন শূন্য থাকবে কি না, প্রশ্ন করলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শূন্য এবার কোথাও থাকবে না। দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিষয়ে তিনি বলেন, এটা আমাদের স্ট্র্যাটেজি। ইলেকশন স্ট্র্যাটেজি। এটা তো ওপেনলি আমাদের চেয়ারম্যান বলে দিয়েছেন, জোটের চেয়ারম্যান, আমাদের প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামী লীগ সভাপতি। একাধিকবার তিনি বলেছেন। কাজেই ওই সিদ্ধান্তে পরিবর্তন নতুন করে নেই। জাতীয় পার্টির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হচ্ছে, কথা হবে। গতকালের বৈঠকের পর ১৪ দলের নেতারা সন্তুষ্ট কি না, জানতে চাইলে কাদের বলেন, ১৪ দলের নেতারা সন্তুষ্ট কি না, এই খবরটা নেওয়ার দায়িত্ব সাংবাদিকদের। কিন্তু বৈঠকে কী হয়েছে, প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, উই আর হ্যাপি। আমাদের কোনো অসুবিধা নেই। খুব সুন্দরভাবে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে কথাবার্তা হয়েছে। রাজনৈতিক যে গুরুত্বটা আমরা দিয়েছি, সেখানে ঐক্যের কোনো ঘাটতি নেই। এতে সবাই ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশের স্বার্থে, সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে, আজকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের যে অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে, সেটা অব্যাহত রাখতে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বতন্ত্র স্বতন্ত্রের জায়গায় আছে। একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে আমি যদি চাপ দিয়ে নির্বাচন থেকে সরাতে চাই, সেটা কি নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন হবে না? যেই জায়গায় জাপার প্রার্থী থাকবে, সেখানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী প্রত্যাহার করবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা তাদের সঙ্গে আলোচনা করব। ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৪ দলের সঙ্গে আলোচনা শেষ। এখন সিট ভাগাভাগির ব্যাপারটা আজকালের মধ্যে ফাইনাল হয়ে যাবে। একতরফা নির্বাচনের অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা একতরফা নির্বাচনে যাওয়ার বিষয় নয়। যারা (এটা) বলে, তারা একতরফা বাধা দিচ্ছে। আমাদের একতরফা এই যে বাধা দিচ্ছে, এর বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ। দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে দল থেকে নির্দেশনা কী থাকবে? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'নির্বাচন চলাকালে তাদের বিরুদ্ধে কিছু করার কোনো সুযোগ নেই। নৌকার প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বাধার সম্মুখীন হচ্ছে, এক্ষেত্রে দলের সিদ্ধান্ত কী হবে, জানতে চাইলে কাদের বলেন, সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত। বাধা দেবে এমন কোনো, এটা তো নির্বাচনী আচরণবিধির বাইরে। নির্বাচনী আচরণবিধি তো লঙ্ঘন করতে পারবে না। পার্টির লোক হোক, যেই হোক, বাধা দেওয়ার কোনো অধিকার কারো নেই।
১৪ দলের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির বিষয়ে সিদ্ধান্ত আজকালের মধ্যে চূড়ান্ত হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সমাবেশের অনুমতি না পেয়ে ১০ ডিসেম্বর আ. লীগের আলোচনা সভা
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সমাবেশের অনুমতি না দেওয়ায় আগামী ১০ ডিসেম্বর আলোচনা সভার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ওইদিন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছিল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নির্বাচন কমিশন সমাবেশের অনুমতি দেয়নি। সমাবেশের পরিবর্তে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।'
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সমাবেশের অনুমতি না দেওয়ায় আগামী ১০ ডিসেম্বর আলোচনা সভার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ।
আইফোন ১৬: ডিজাইন ফাঁস, থাকতে পারে নতুন ‘ক্যাপচার’ বাটন
সম্প্রতি আইফোন ১৬ প্রোর ডিজাইনের একটি সিএডি (কম্পিউটার এইডেড ডিজাইন) ফাইল অনলাইনে ফাঁস হয়েছে। যা থেকে অ্যাপলের আসন্ন ফ্ল্যাগশিপ মডেলটিতে কী থাকতে পারে তার একটি আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ফাঁস হওয়া ডিজাইন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, কিছু ছোটখাটো পরিবর্তন বাদ দিলে আইফোন ১৬'র ডিজাইন অনেকটা আইফোন ১৫'র মতো একই থাকবে। এর আগে, পেছনের ক্যামেরা প্ল্যাটফর্মের ডিজাইনের একটি ত্রিভুজাকার বিন্যাসে পরিবর্তন আনার গুজব উঠলেও ফাঁস হওয়া ফাইলগুলো থেকে দেখা যায় আইফোন ১৫ প্রোতে দেখা সেই পরিচিত থ্রি-লেন্স ডিজাইনটিই অক্ষুণ্ণ রাখা হয়েছে। তবে ফাঁস হওয়া ফাইলগুলোতে একটি উল্লেখযোগ্য নতুন সংযোজন দেখা যায়। ১৬'র ডিজাইনে ডানদিকে পাওয়ার বাটনের নীচে যুক্ত করা হয়েছে নতুন একটি ক্যাপচার বাটন। এর মাধ্যমে ছবি ক্যাপচার করতে আর স্ক্রীনে ট্যাপ করার প্রয়োজন পড়বে না। এটি ফটোগ্রাফির অভিজ্ঞতাকে আরও সহজ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও ক্যাপচার বাটনের সম্পূর্ণ ফাংশন বা ক্ষমতা এখনও রহস্যে আবৃত, তবুও ধারণা করা হচ্ছে, বাটনটি হালকাভাবে ট্যাপ করলে ফোকাস ট্রিগার হবে এবং সম্পূর্ন চাপলে ফটো ক্যাপচার হবে। অনেকটা প্রথাগত ক্যামেরার শাটার বাটনের মতোই। প্রযুক্তি বিষয়ক গণমাধ্যম ৯১মোবাইলসের তথ্য অনুযায়ী, আইফোন ১৬ প্রোর সঙ্গে আইফোন ১৫ প্রোর বেশ কিছু সাদৃশ্য থাকবে। পার্থক্যের মধ্যে আইফোন ১৬ প্রো এর পূর্বসূরীর চেয়ে আকারে সামান্য বড় হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর দৈর্ঘ্য ১৪৯ দশমিক ৬, প্রস্থ ৭১ দশমিক ৪ এবং পুরুত্ব ৮ দশমিক ৪ মিলিমিটার হতে পারে। অপরদিকে, এর ডিসপ্লের আকার ৬ দশমিক ১ ইঞ্চি নাকি ৬ দশমিক ৩ ইঞ্চি হবে তা নিয়ে এখনও বিতর্ক চলছে। ৯১মোবাইলসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুনভাবে প্রকাশিত ডাইমেনশন এবং কাচের চারপাশে পাতলা বেজেল প্রদর্শনের কারণে তারা মনে করছেন এটি ৬ দশমিক ৩ ইঞ্চি হবে। এছাড়া আইফোন ১৬ প্রো একটি ৫এক্স টেট্রা প্রিজম টেলিফোটো ক্যামেরা নিয়ে আসতে পারে। যা ফোনটির জুম করার ক্ষমতা আরও বাড়াবে। এর বাইরে, স্মার্টফোনটিতে ৪৮ মেগাপিক্সেলের একটি আল্ট্রা-ওয়াইড ক্যামেরা এবং একটি ৩ হাজার ৩৫৫ এমএএইচ ব্যাটারি থাকারও গুঞ্জন উঠেছে। তবে এর অপটিক্যাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন সম্পর্কিত কোনো তথ্য এখনও জানা যায়নি। অ্যাপল সাধারণত সেপ্টেম্বরে একটি বড় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের নতুন আইফোন মডেলগুলো উন্মোচন করে থাকে। আশা করা হচ্ছে, এবারের ইভেন্টে আইফোন ১৬ প্রোর পাশাপাশি চতুর্থ প্রজন্মের আইফোন এসই এবং অ্যাপল ওয়াচ এক্স-ও উন্মোচন করবে অ্যাপল। ইংরেজি থেকে ভাবানুবাদ করেছেন আহমেদ বিন কাদের অনি
সম্প্রতি আইফোন ১৬ প্রোর ডিজাইনের একটি সিএডি (কম্পিউটার এইডেড ডিজাইন) ফাইল অনলাইনে ফাঁস হয়েছে। যা থেকে অ্যাপলের আসন্ন ফ্ল্যাগশিপ মডেলটিতে কী থাকতে পারে তার একটি আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
চালের ব্যাগে ভেজা আইফোন শুকাবেন না: অ্যাপল
শখের স্মার্টফোন পানিতে ভিজে যাওয়া অনেকের কাছেই এক দুঃস্বপ্ন। এই সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান হিসেবে অনেকে ফোন চালের ব্যাগে রেখে পানি শুকিয়ে নেবার পরামর্শ দেয়। তবে এতে হতে পারে হিতে বিপরীত। আইফোনের ক্ষেত্রে চালে শুকিয়ে নেওয়ার এই টোটকা ক্ষতিকর হতে পারে, এমন হুশিয়ারি দিয়েছে অ্যাপল। ফোনে পানি প্রবেশ করলে চার্জ দেবার সময়ে একটি 'অ্যালার্ট' স্ক্রিনে ভেসে উঠবে এবং ফোন চার্জ নেবে না। এই 'অ্যালার্ট' দেখা মাত্রই ফোন থেকে চার্জার খুলে নিতে হবে। আইফোন পুরোপুরি শুকিয়ে যাবার আগ পর্যন্ত কোনভাবেই একে তারযুক্ত চার্জারের মাধ্যমে চার্জ দেওয়া যাবে না। অ্যাপলের মতে আইফোন ভিজে গেলে সেটাকে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করে এমন শুকনো কোন জায়গায় রেখে প্রাকৃতিকভাবেই শুকাতে দেওয়া উচিত। এ ছাড়া ফোনের কানেকটর নিচের দিকে রেখে ফোন হাতের তালুর উপর আলতো করে ঝাঁকিয়ে নিলে অতিরিক্ত পানি বেরিয়ে আসবে। ফোন পুরোপুরি শুকিয়ে যাবার পরেও ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে তবেই এতে চার্জ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে অ্যাপল। অ্যাপলের মতে, স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ভেজা আইফোন শুকাতে সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। আর এর মধ্যে ওয়্যারলেস চার্জারের মাধ্যমে চাইলে আপনি আইফোন চার্জ করে নিতে পারেন। ফোন শুকিয়ে যাবার পরেও যদি চার্জারের মাধ্যমে চার্জ না নেয় তখন ক্যাবল ও অ্যাডাপটার খুলে আবার সংযুক্ত করে চার্জ দেওয়ার চেষ্টা করা উচিত। আইফোনের অফিশিয়াল গাইডলাইন অনুযায়ী, ফোন শুকানোর জন্য কখনোই বাইরে থেকে অতিরিক্ত তাপ বা চাপ প্রয়োগ করা যাবে না। অর্থাৎ, রেডিয়েটর বা হেয়ার ড্রায়ারের মতো কোনো যন্ত্র ব্যবহার করা যাবেনা। এগুলো ফোনের বাড়তি ক্ষতি করতে পারে। এ ছাড়াও কটন বাড বা তোয়ালে দিয়েও একে পরিষ্কার করাও উচিত নয়। এসব আপাত: নিরীহ উপকরণেও ফোনের ক্ষতি হতে পারে, আর একইসঙ্গে বেড়ে যেতে পারে শুকানোর সময়সীমা। পরিশেষে, আইফোন ভিজে গেলে চালভর্তি ব্যাগে না শুকানোর পরামর্শও দেয় অ্যাপল। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, চালভর্তি ব্যাগে ফোন রাখা হলে চালের ছোট ছোট কণা ঢুকে ফোনের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই প্রচলিত এই টোটকা মানতে গেলে ফোনের লাভ নয়, ক্ষতিই বেশি। ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করাই বরং আইফোনের ক্ষেত্রে বেশি যুক্তিসঙ্গত। ইংরেজি থেকে ভাবানুবাদ করেছেন নাফিসা ইসলাম মেঘা
শখের স্মার্টফোন পানিতে ভিজে যাওয়া অনেকের কাছেই এক দুঃস্বপ্ন। এই সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান হিসেবে অনেকে ফোন চালের ব্যাগে রেখে পানি শুকিয়ে নেবার পরামর্শ দেয়। তবে এতে হতে পারে হিতে বিপরীত।
বাজারে আসার আগেই অ্যাপলের ইলেকট্রিক গাড়ি প্রকল্প 'টাইটান' বন্ধ
অ্যাপলের বহুল প্রতীক্ষিত ইলেকট্রিক গাড়ি ২০২৮ সালে বাজারে আসতে যাচ্ছে। এমন এক খবরে সবাই আগ্রহী হয়ে উঠলেও, এক মাসের ব্যবধানেও মিলল নতুন খবর। মুখ থুবড়ে পড়েছে দীর্ঘদিন ধরে চলমান অ্যাপলের 'প্রজেক্ট টাইটান' নামে পরিচিত ইলেকট্রিক গাড়ির প্রকল্প। বেশ কয়েক দফা পেছানোর পর ২০২৮ সালের তারিখ নির্ধারিত হয়েছে বলে জানিয়েছিল মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো। তবে প্রযুক্তিপ্রেমীদের সেই আশা আপাতত পূরণ হচ্ছে না। এক দশক আগে অ্যাপল এই প্রকল্পটি চালু করেছিল বলে ধারণা করা হয়। তবে প্রতিষ্ঠানটি কখনো এ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুসারে, অ্যাপলের ইলেকট্রিক গাড়ির প্রকল্পে কর্মরত কয়েকজন কর্মীকে প্রতিষ্ঠানটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিভাগে স্থানান্তর করা হয়েছে। অ্যাপলের এই পরিবর্তিত কৌশল নিয়ে ব্লুমবার্গই প্রথম সংবাদ প্রকাশ করে। উপদেষ্টা প্রতিষ্ঠান ক্রিয়েটিভ স্ট্র্যাটেজিসের প্রধান নির্বাহী বেন বাজারিন বলেছেন,  'এই খবর যদি সত্য হয়ে থাকে, তাহলে ধরে নেওয়া যায় অ্যাপল জেনারেটিভ এআইয়ে আরও বেশি মনোযোগ দেবে। এই উদ্যোগে এআই প্ল্যাটফর্ম পর্যায়ে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে অ্যাপলের এগিয়ে আসার বিষয়ে আরও ইতিবাচক হবেন বিনিয়োগকারীরা।' অ্যালফাবেট (গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান) ও মাইক্রোসফটের মতো বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে বড় আকারে বিনিয়োগ করলেও অ্যাপল এখন পর্যন্ত এই খাতে তেমন কোনো উদ্যোগই নেয়নি। এ বিষয়ে অ্যাপলের কাছে মন্তব্য চাওয়া হলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। বরাবরের মতোই অ্যাপল এবারও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। এক দশক আগে অ্যাপল যখন 'প্রজেক্ট টাইটান' চালু করে, তখন সিলিকন ভ্যালিতে চালকবিহীন স্বয়ংক্রিয় গাড়ির প্রতি আগ্রহের জোয়ার বয়ে যাচ্ছিল। প্রথমে পুরোপুরি চালকবিহীন গাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও অ্যাপল পরবর্তীতে সীমিত বৈশিষ্ট্যযুক্ত ইলেকট্রিক গাড়ি নিয়ে কাজ করেছে। মূল পরিকল্পনায় স্টিয়ারিং হুইল ছাড়া সম্পূর্ণ স্বচালিত গাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটি এমন এক ধরনের গাড়ি নির্মাণ করতে চেয়েছে, যেখানে চালককে সজাগ থাকতে হবে এবং প্রয়োজনমতো গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিতে হবে। ২০২০ সালে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল যে অ্যাপল ২০২৪ বা ২০২৫ সালের মধ্যেই একটি গাড়ি প্রকাশের বিষয়টি বিবেচনা করছে। তবে করোনা মহামারী বিশ্বব্যাপী অটোমোবাইল খাতকে বিঘ্নিত করার আগে থেকেই অ্যাপলের এই প্রকল্পের অগ্রগতি আশানুরূপ ছিল না। সম্প্রতি বিখ্যাত অ্যাপল বিশ্লেষক এবং মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদক মার্ক গারম্যান জানিয়েছিলেন, অ্যাপলের ইলেকট্রিক গাড়ি ২০২৮ সালে বাজারে আসতে পারে। তবে অ্যাপলের ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য যারা দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছেন, তাদের অপেক্ষার প্রহর আরও দীর্ঘায়িত হলো। আদৌ কোনোদিন অ্যাপলের সার্বজনীন লোগো সহ কোনো ইলেকট্রিক গাড়ি সড়কে দেখা যাবে কী না, সেটা নিয়েও দেখা দিয়েছে সংশয়। ইংরেজি থেকে ভাবানুবাদ করেছেন আহমেদ হিমেল
অ্যাপলের বহুল প্রতীক্ষিত ইলেকট্রিক গাড়ি ২০২৮ সালে বাজারে আসতে যাচ্ছে। এমন এক খবরে সবাই আগ্রহী হয়ে উঠলেও, এক মাসের ব্যবধানেও মিলল নতুন খবর। মুখ থুবড়ে পড়েছে দীর্ঘদিন ধরে চলমান অ্যাপলের 'প্রজেক্ট টাইটান' নামে পরিচিত ইলেকট্রিক গাড়ির প্রকল্প।
৫ হাজার টাকার মধ্যে সেরা ৫ ওয়্যারলেস ইয়ারবাড
গানের ছন্দ, চলচ্চিত্রের সংলাপ থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিডিওতে সুর ও শব্দের অভিজ্ঞতা অনেক মানুষের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এর এ ক্ষেত্রে প্রথাগত হেডফোন, হেডসেট, ইয়ারফোন, এমন কী, স্পিকারকে ধীরে ধীরে পেছনে ঠেলে দিচ্ছে ওয়্যারলেস ইয়ারবাড। সহজে বহনযোগ্য, কম ওজনের ও তারবিহীন এই গ্যাজেট অবিশ্বাস্য দ্রুততার সঙ্গে জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। তবে সমস্যা হল, সব ধরনের প্রয়োজনীয় ফিচার ও গুণমান ঠিক রেখে স্বল্প বাজেটে ইয়ারবাড খুঁজে পাওয়া সহজ নয়। আজকের লেখায় থাকছে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে মানসম্পন্ন অডিও পাওয়া যায় এমন কয়েকটি ওয়্যারলেস ইয়ারবাডের বিস্তারিত। তবে স্টোরভেদে এগুলোর দাম ও প্রাপ্যতা ভিন্ন হতে পারে। ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাটারি লাইফসহ দীর্ঘস্থায়ী কার্যক্ষমতার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে শাওমি রেডমি বাডস এসেনশিয়াল। ৭.২ মি.মি ডায়নামিক ড্রাইভার দেয় স্পষ্ট অডিও শোনার অভিজ্ঞতা। ব্লুটুথ ৫.২ কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করে স্থিতিশীল ট্রান্সমিশন, আইপিএক্স৪ পানি নিরোধক দেয় বাড়তি সুবিধা। মাল্টি-ফাংশন বাটন থাকায় কল এবং গান শোনা নিয়ন্ত্রণ করা যায় সহজে এবং ওজনে হালকা হওয়ায় টানা ব্যবহারেও আরাম পাওয়া যায়। মূল্য: ১,৬৫০ টাকা কিউসিওয়াই এইচটি০৫ টিডব্লিউএস এএনসি কিউসিওয়াই এইচটি০৫ টিডব্লিউএস এএনসি ফিচার: ব্লুটুথ ৫.২ ১০ মি.মি ডায়নামিক ড্রাইভার ৩টি নয়েজ ক্যানসেলেশন মোড ইউএসবি-সি চার্জিং পোর্ট কিউসিওয়াই এইচটি০৫ টিডব্লিউএস এএনসি ওয়্যারলেস ইয়ারবাডে রয়েছে ব্লুটুথ ৫.২ এবং ১০ ​​মি.মি ডায়নামিক ড্রাইভার, যা স্থিতিশীল সংযোগ ছাড়াও স্পষ্ট অডিও সরবরাহ করে। অ্যাক্টিভ নয়েজ ক্যানসেলেশন (এএনসি) ছাড়া ৩০ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাটারি লাইফ পাওয়া যায় বিধায় দীর্ঘসময় ব্যবহার সুবিধা পাওয়া যায়। এতে রয়েছে ৩৮০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি এবং তিনটি নয়েজ-ক্যানসেলেশন মোড। ইয়ারবাডটি অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস উভয় সিস্টেমের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এতে রয়েছে ১০ মিটার পর্যন্ত সংযোগ পরিসর এবং ইউএসবি-সি চার্জিং পোর্ট৷ মূল্য: ২,৪৫০ টাকা সাউন্ডপিটস ক্যাপসুল৩ প্রো সাউন্ডপিটস ক্যাপসুল৩ প্রো ফিচার: হাইব্রিড অ্যাক্টিভ নয়েজ ক্যানসেলেশন  ১২ মি.মি বায়োডাইনামিক ড্রাইভার উচ্চ রেজ্যুলেশন অডিও এবং এলডিএসি কোডেক প্রযুক্তি গেম মোড এবং টাচ কন্ট্রোল ব্লুটুথ ভি ৫.৩ সাউন্ডপিএটিএস ক্যাপসুল৩ প্রো উন্নত নয়েজ ক্যানসেলেশন প্রযুক্তি অফার করে। ১২ মি.মি বায়োডাইনামিক ড্রাইভার থাকায় উচ্চতর শব্দমানের জন্য উচ্চ রেজ্যুলেশনের অডিও এবং এলডিএসি কোডেক প্রযুক্তি সুবিধা পাওয়া যায়। ইয়ারবাডটিতে গেম মোড এবং স্ট্যান্ডার্ডাইজড টাচ কন্ট্রোল রয়েছে। ব্লুটুথ ভি৫.৩ স্থিতিশীল সংযোগ নিশ্চিত করে এবং চার্জিং কেসসহ ৫২ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাটারি লাইফ পাওয়া যায়। মূল্য: ৪,১৯৯ টাকা বোট এয়ারডোপস ৪১১ এএনসি বোট এয়ারডোপস ৪১১ এএনসি ফিচার: অ্যাক্টিভ নয়েজ ক্যানসেলেশন  ১০ মি.মি ড্রাইভার স্পর্শের সাহায্যে শব্দমাত্রা নিয়ন্ত্রণ আইপিএক্স৪ পানি ও ঘাম নিরোধক ব্লুটুথ ভি৫.২ বোট এয়ারডোপস ৪১১ এএনসি অ্যাক্টিভ নয়েজ ক্যানসেলেশন সুবিধাসহ উন্নত অডিও অভিজ্ঞতার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। ইয়ারবাডের ১০ মিমি ড্রাইভার পরিষ্কার এবং শক্তিশালী শব্দের অভিজ্ঞতা দেয়। স্পর্শ করলে শব্দের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং  আইপিএক্স৪ পানি ও ঘাম নিয়ন্ত্রণ করে স্থায়িত্ব বাড়িয়ে দেয়। ব্লুটুথ ভি৫.৩ স্থিতিশীল সংযোগ প্রদান করে এবং সাড়ে ১৭ ঘণ্টা ব্যাটারি লাইফ দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহার নিশ্চিত করে। চার্জিং কেস এবং ইয়ারবাডে দ্রুত চার্জিং সুবিধা রয়েছে। মূল্য: ৪,২৫০ টাকা স্কালক্যান্ডি ডাইম টু স্কালক্যান্ডি ডাইম টু ফিচার: ইনবিল্ট টাইল-ফাইন্ডিং প্রযুক্তি সুরক্ষিত, নয়েজ ক্যানসেলেশন মোড আইপিএক্স৪ ঘাম ও পানি-নিরোধক ব্লুটুথ ৫.২ সংযোগ মাইক্রো-ইউএসবি চার্জিং স্কালক্যান্ডি ডাইম টু প্রযুক্তি ও সুবিধার এক অনন্য সমন্বয়। এতে টাইল-ফাইন্ডিং প্রযুক্তি রয়েছে, যা ইয়ারবাড হারিয়ে গেলে সহজে খুঁজে পেতে সাহায্য করে। ১২ ঘণ্টার ব্যাটারি লাইফ পাওয়া যায় এতে। নয়েজ ক্যানসেলেশন মোড এবং আইপিএক্স৪ ঘাম ও জল নিরোধক রয়েছে। ব্লুটুথ ৫.২ স্থিতিশীল সংযোগ নিশ্চিত করে। ও ছাড়া মাইক্রো-ইউএসবি চার্জিং পোর্ট রয়েছে। মূল্য: ৪,৪৯০ টাকা ইংরেজি থেকে ভাবানুবাদ করেছেন আসরিফা সুলতানা রিয়া আরও১৬ হাজার ফুট নিচে পড়েও অক্ষত আইফোন কিউসিওয়াই এইচটি০৫ টিডব্লিউএস এএনসি ওয়্যারলেস ইয়ারবাডে রয়েছে ব্লুটুথ ৫.২ এবং ১০ ​​মি.মি ডায়নামিক ড্রাইভার, যা স্থিতিশীল সংযোগ ছাড়াও স্পষ্ট অডিও সরবরাহ করে। অ্যাক্টিভ নয়েজ ক্যানসেলেশন (এএনসি) ছাড়া ৩০ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাটারি লাইফ পাওয়া যায় বিধায় দীর্ঘসময় ব্যবহার সুবিধা পাওয়া যায়। এতে রয়েছে ৩৮০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি এবং তিনটি নয়েজ-ক্যানসেলেশন মোড। ইয়ারবাডটি অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস উভয় সিস্টেমের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এতে রয়েছে ১০ মিটার পর্যন্ত সংযোগ পরিসর এবং ইউএসবি-সি চার্জিং পোর্ট৷ মূল্য: ২,৪৫০ টাকা সাউন্ডপিটস ক্যাপসুল৩ প্রো সাউন্ডপিটস ক্যাপসুল৩ প্রো ফিচার: হাইব্রিড অ্যাক্টিভ নয়েজ ক্যানসেলেশন  ১২ মি.মি বায়োডাইনামিক ড্রাইভার উচ্চ রেজ্যুলেশন অডিও এবং এলডিএসি কোডেক প্রযুক্তি গেম মোড এবং টাচ কন্ট্রোল ব্লুটুথ ভি ৫.৩ সাউন্ডপিএটিএস ক্যাপসুল৩ প্রো উন্নত নয়েজ ক্যানসেলেশন প্রযুক্তি অফার করে। ১২ মি.মি বায়োডাইনামিক ড্রাইভার থাকায় উচ্চতর শব্দমানের জন্য উচ্চ রেজ্যুলেশনের অডিও এবং এলডিএসি কোডেক প্রযুক্তি সুবিধা পাওয়া যায়। ইয়ারবাডটিতে গেম মোড এবং স্ট্যান্ডার্ডাইজড টাচ কন্ট্রোল রয়েছে। ব্লুটুথ ভি৫.৩ স্থিতিশীল সংযোগ নিশ্চিত করে এবং চার্জিং কেসসহ ৫২ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাটারি লাইফ পাওয়া যায়। মূল্য: ৪,১৯৯ টাকা বোট এয়ারডোপস ৪১১ এএনসি বোট এয়ারডোপস ৪১১ এএনসি ফিচার: অ্যাক্টিভ নয়েজ ক্যানসেলেশন  ১০ মি.মি ড্রাইভার স্পর্শের সাহায্যে শব্দমাত্রা নিয়ন্ত্রণ আইপিএক্স৪ পানি ও ঘাম নিরোধক ব্লুটুথ ভি৫.২ বোট এয়ারডোপস ৪১১ এএনসি অ্যাক্টিভ নয়েজ ক্যানসেলেশন সুবিধাসহ উন্নত অডিও অভিজ্ঞতার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। ইয়ারবাডের ১০ মিমি ড্রাইভার পরিষ্কার এবং শক্তিশালী শব্দের অভিজ্ঞতা দেয়। স্পর্শ করলে শব্দের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং  আইপিএক্স৪ পানি ও ঘাম নিয়ন্ত্রণ করে স্থায়িত্ব বাড়িয়ে দেয়। ব্লুটুথ ভি৫.৩ স্থিতিশীল সংযোগ প্রদান করে এবং সাড়ে ১৭ ঘণ্টা ব্যাটারি লাইফ দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহার নিশ্চিত করে। চার্জিং কেস এবং ইয়ারবাডে দ্রুত চার্জিং সুবিধা রয়েছে। মূল্য: ৪,২৫০ টাকা স্কালক্যান্ডি ডাইম টু স্কালক্যান্ডি ডাইম টু ফিচার: ইনবিল্ট টাইল-ফাইন্ডিং প্রযুক্তি সুরক্ষিত, নয়েজ ক্যানসেলেশন মোড আইপিএক্স৪ ঘাম ও পানি-নিরোধক ব্লুটুথ ৫.২ সংযোগ মাইক্রো-ইউএসবি চার্জিং স্কালক্যান্ডি ডাইম টু প্রযুক্তি ও সুবিধার এক অনন্য সমন্বয়। এতে টাইল-ফাইন্ডিং প্রযুক্তি রয়েছে, যা ইয়ারবাড হারিয়ে গেলে সহজে খুঁজে পেতে সাহায্য করে। ১২ ঘণ্টার ব্যাটারি লাইফ পাওয়া যায় এতে। নয়েজ ক্যানসেলেশন মোড এবং আইপিএক্স৪ ঘাম ও জল নিরোধক রয়েছে। ব্লুটুথ ৫.২ স্থিতিশীল সংযোগ নিশ্চিত করে। ও ছাড়া মাইক্রো-ইউএসবি চার্জিং পোর্ট রয়েছে। মূল্য: ৪,৪৯০ টাকা ইংরেজি থেকে ভাবানুবাদ করেছেন আসরিফা সুলতানা রিয়া আরও১৬ হাজার ফুট নিচে পড়েও অক্ষত আইফোন সাউন্ডপিএটিএস ক্যাপসুল৩ প্রো উন্নত নয়েজ ক্যানসেলেশন প্রযুক্তি অফার করে। ১২ মি.মি বায়োডাইনামিক ড্রাইভার থাকায় উচ্চতর শব্দমানের জন্য উচ্চ রেজ্যুলেশনের অডিও এবং এলডিএসি কোডেক প্রযুক্তি সুবিধা পাওয়া যায়। ইয়ারবাডটিতে গেম মোড এবং স্ট্যান্ডার্ডাইজড টাচ কন্ট্রোল রয়েছে। ব্লুটুথ ভি৫.৩ স্থিতিশীল সংযোগ নিশ্চিত করে এবং চার্জিং কেসসহ ৫২ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাটারি লাইফ পাওয়া যায়। মূল্য: ৪,১৯৯ টাকা বোট এয়ারডোপস ৪১১ এএনসি বোট এয়ারডোপস ৪১১ এএনসি ফিচার: অ্যাক্টিভ নয়েজ ক্যানসেলেশন  ১০ মি.মি ড্রাইভার স্পর্শের সাহায্যে শব্দমাত্রা নিয়ন্ত্রণ আইপিএক্স৪ পানি ও ঘাম নিরোধক ব্লুটুথ ভি৫.২ বোট এয়ারডোপস ৪১১ এএনসি অ্যাক্টিভ নয়েজ ক্যানসেলেশন সুবিধাসহ উন্নত অডিও অভিজ্ঞতার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। ইয়ারবাডের ১০ মিমি ড্রাইভার পরিষ্কার এবং শক্তিশালী শব্দের অভিজ্ঞতা দেয়। স্পর্শ করলে শব্দের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং  আইপিএক্স৪ পানি ও ঘাম নিয়ন্ত্রণ করে স্থায়িত্ব বাড়িয়ে দেয়। ব্লুটুথ ভি৫.৩ স্থিতিশীল সংযোগ প্রদান করে এবং সাড়ে ১৭ ঘণ্টা ব্যাটারি লাইফ দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহার নিশ্চিত করে। চার্জিং কেস এবং ইয়ারবাডে দ্রুত চার্জিং সুবিধা রয়েছে। মূল্য: ৪,২৫০ টাকা স্কালক্যান্ডি ডাইম টু স্কালক্যান্ডি ডাইম টু ফিচার: ইনবিল্ট টাইল-ফাইন্ডিং প্রযুক্তি সুরক্ষিত, নয়েজ ক্যানসেলেশন মোড আইপিএক্স৪ ঘাম ও পানি-নিরোধক ব্লুটুথ ৫.২ সংযোগ মাইক্রো-ইউএসবি চার্জিং স্কালক্যান্ডি ডাইম টু প্রযুক্তি ও সুবিধার এক অনন্য সমন্বয়। এতে টাইল-ফাইন্ডিং প্রযুক্তি রয়েছে, যা ইয়ারবাড হারিয়ে গেলে সহজে খুঁজে পেতে সাহায্য করে। ১২ ঘণ্টার ব্যাটারি লাইফ পাওয়া যায় এতে। নয়েজ ক্যানসেলেশন মোড এবং আইপিএক্স৪ ঘাম ও জল নিরোধক রয়েছে। ব্লুটুথ ৫.২ স্থিতিশীল সংযোগ নিশ্চিত করে। ও ছাড়া মাইক্রো-ইউএসবি চার্জিং পোর্ট রয়েছে। মূল্য: ৪,৪৯০ টাকা ইংরেজি থেকে ভাবানুবাদ করেছেন আসরিফা সুলতানা রিয়া আরও১৬ হাজার ফুট নিচে পড়েও অক্ষত আইফোন বোট এয়ারডোপস ৪১১ এএনসি অ্যাক্টিভ নয়েজ ক্যানসেলেশন সুবিধাসহ উন্নত অডিও অভিজ্ঞতার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। ইয়ারবাডের ১০ মিমি ড্রাইভার পরিষ্কার এবং শক্তিশালী শব্দের অভিজ্ঞতা দেয়। স্পর্শ করলে শব্দের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং  আইপিএক্স৪ পানি ও ঘাম নিয়ন্ত্রণ করে স্থায়িত্ব বাড়িয়ে দেয়। ব্লুটুথ ভি৫.৩ স্থিতিশীল সংযোগ প্রদান করে এবং সাড়ে ১৭ ঘণ্টা ব্যাটারি লাইফ দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহার নিশ্চিত করে। চার্জিং কেস এবং ইয়ারবাডে দ্রুত চার্জিং সুবিধা রয়েছে। মূল্য: ৪,২৫০ টাকা স্কালক্যান্ডি ডাইম টু স্কালক্যান্ডি ডাইম টু ফিচার: ইনবিল্ট টাইল-ফাইন্ডিং প্রযুক্তি সুরক্ষিত, নয়েজ ক্যানসেলেশন মোড আইপিএক্স৪ ঘাম ও পানি-নিরোধক ব্লুটুথ ৫.২ সংযোগ মাইক্রো-ইউএসবি চার্জিং স্কালক্যান্ডি ডাইম টু প্রযুক্তি ও সুবিধার এক অনন্য সমন্বয়। এতে টাইল-ফাইন্ডিং প্রযুক্তি রয়েছে, যা ইয়ারবাড হারিয়ে গেলে সহজে খুঁজে পেতে সাহায্য করে। ১২ ঘণ্টার ব্যাটারি লাইফ পাওয়া যায় এতে। নয়েজ ক্যানসেলেশন মোড এবং আইপিএক্স৪ ঘাম ও জল নিরোধক রয়েছে। ব্লুটুথ ৫.২ স্থিতিশীল সংযোগ নিশ্চিত করে। ও ছাড়া মাইক্রো-ইউএসবি চার্জিং পোর্ট রয়েছে। মূল্য: ৪,৪৯০ টাকা ইংরেজি থেকে ভাবানুবাদ করেছেন আসরিফা সুলতানা রিয়া আরও১৬ হাজার ফুট নিচে পড়েও অক্ষত আইফোন স্কালক্যান্ডি ডাইম টু প্রযুক্তি ও সুবিধার এক অনন্য সমন্বয়। এতে টাইল-ফাইন্ডিং প্রযুক্তি রয়েছে, যা ইয়ারবাড হারিয়ে গেলে সহজে খুঁজে পেতে সাহায্য করে। ১২ ঘণ্টার ব্যাটারি লাইফ পাওয়া যায় এতে। নয়েজ ক্যানসেলেশন মোড এবং আইপিএক্স৪ ঘাম ও জল নিরোধক রয়েছে। ব্লুটুথ ৫.২ স্থিতিশীল সংযোগ নিশ্চিত করে। ও ছাড়া মাইক্রো-ইউএসবি চার্জিং পোর্ট রয়েছে। মূল্য: ৪,৪৯০ টাকা ইংরেজি থেকে ভাবানুবাদ করেছেন আসরিফা সুলতানা রিয়া আরও১৬ হাজার ফুট নিচে পড়েও অক্ষত আইফোন ইংরেজি থেকে ভাবানুবাদ করেছেন আসরিফা সুলতানা রিয়া
গানের ছন্দ, চলচ্চিত্রের সংলাপ থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিডিওতে সুর ও শব্দের অভিজ্ঞতা অনেক মানুষের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এর এ ক্ষেত্রে প্রথাগত হেডফোন, হেডসেট, ইয়ারফোন, এমন কী, স্পিকারকে ধীরে ধীরে পেছনে ঠেলে দিচ্ছে ওয়্যারলেস ইয়ারবাড।
স্মার্টফোন সরবরাহে স্যামসাংকে সরিয়ে শীর্ষস্থান দখল করল অ্যাপল
২০২৩ সালে স্মার্টফোন সরবরাহের দিক থেকে স্যামসাংকে টপকে প্রথমবারের মতো শীর্ষস্থান দখল করেছে অ্যাপল।  ইন্টারন্যাশনাল ডেটা কর্পোরেশনের (আইডিসি) 'ওয়ার্ল্ডওয়াইড কোয়ার্টারলি মোবাইল ফোন ট্র্যাকার' এই তথ্য প্রকাশ করেছে। আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি বাজার বিশ্লেষক ক্যানালিসের প্রকাশিত তথ্যেও একই চিত্র দেখা গেছে। উল্লেখ্য, সরবরাহ (শিপমেন্ট) এবং বিক্রি (সেল) এক বিষয় নয়। সরবরাহ অর্থ হচ্ছে শোরুম, ডিলার বা বিক্রেতার কাছে পণ্য পাঠানো। সরবরাহকৃত সব পণ্য বিক্রি নাও হতে পারে। তবে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী বিক্রেতার কাছে পণ্য সরবরাহ করে থাকে। অর্থাৎ বিক্রি না বাড়লে সরবরাহ বাড়ানো হয় না, এমনটা ধরে নেওয়া যায়। আইডিসির তথ্য অনুযায়ী, গত বছর অ্যাপল সারা বিশ্বে ২৩ কোটি ৪৬ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন সরবরাহ করেছে, আর স্যামসাংয়ের ক্ষেত্রে এ সংখ্যাটি ২২ কোটি ৬৬ লাখ ইউনিট। শীর্ষ পাঁচে থাকা বাকী তিন প্রতিষ্ঠান হচ্ছে শাওমি, ওপো এবং ট্রান্সশন, যাদের সরবরাহের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১৪ কোটি ৫৯ লাখ, ১০ কোটি ৩১ লাখ এবং ৯ কোটি ৪৯ লাখ ইউনিট। এই তিনটিই চীনা প্রতিষ্ঠান। আইডিসি উল্লেখ করেছে, বৈশ্বিক স্মার্টফোন সরবরাহের দিক থেকে গত টানা ১৩ বছর শীর্ষস্থান ধরে রেখেছিল স্যামসাং। ২০১০ সালের আগে এই মুকুট ছিল নোকিয়ার দখলে। তখন নোকিয়ার পরের স্থানে ছিল যথাক্রমে স্যামসাং, এলজি, জেটিই এবং ব্ল্যাকবেরির উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রিসার্চ ইন মোশন। অ্যাপলের কাছে স্যামসাংয়ের শীর্ষস্থান হারানোর এ ঘটনাকে প্রযুক্তি বিশ্বে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। স্যামসাংকে হটিয়ে শীর্ষস্থান দখল করলেও হুয়াওয়ে, অনার, ওয়ানপ্লাস ও গুগলের মতো অন্যান্য অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে অ্যাপল। ক্যানালিস জানিয়েছে, হুয়াওয়ে চীনে ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে, যা দেশটির বাজারে অ্যাপলের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে ফেলতে পারে। হুয়াওয়ের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থাকায় প্রতিষ্ঠানটি বিদেশ থেকে চিপ আমদানি করতে পারে না। তা সত্বেও প্রতিষ্ঠানটি তাদের মেট ৬০ প্রো স্মার্টফোনে চীনা চিপ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসএমআইসি-এর তৈরি সেভেন ন্যানোমিটার চিপ ব্যবহার করেছে, যা স্মার্টফোনটিকে ফাইভজি সক্ষমতা দিয়েছে। ইংরেজি থেকে ভাবানুবাদ করেছেন আহমেদ হিমেল
২০২৩ সালে স্মার্টফোন সরবরাহের দিক থেকে স্যামসাংকে টপকে প্রথমবারের মতো শীর্ষস্থান দখল করেছে অ্যাপল।  ইন্টারন্যাশনাল ডেটা কর্পোরেশনের (আইডিসি) 'ওয়ার্ল্ডওয়াইড কোয়ার্টারলি মোবাইল ফোন ট্র্যাকার' এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
৭০ জনের প্রতিবাদ যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ইস্যুতে পরিণত হলো
আন্দোলনরত কয়েকশ শিক্ষার্থীর জমায়েতের মধ্যে ঢুকে সংঘর্ষে জড়ানো, টেনে হিঁচড়ে শিক্ষার্থীদের গণহারে গ্রেপ্তার, নারী অধ্যাপককে মাটিতে ফেলে হাতকড়া পরানো—মার্কিন পুলিশের এমন কর্মকাণ্ডে বিস্মিত গোটা বিশ্ব। মত প্রকাশের অধিকার, প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ প্রদর্শনের অধিকারে সর্বদা সোচ্চার যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পুলিশি অভিযান ও ধরপাকড় দেশটির সংবিধান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা, ভাবমূর্তির সঙ্গে একেবারেই সাংঘর্ষিক। নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, গত ১৮ এপ্রিল থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ দিনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৩০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ফিলিস্তিনে গণহত্যার বিরুদ্ধে আন্দোলনরত ৮০০ জনের বেশি বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। কলাম্বিয়া, ইয়েল, হার্ভাড, এমআইটি, প্রিন্সটনসহ নামকরা সব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের গণহারে বহিষ্কার, আবাসিক সুবিধা কেড়ে নেওয়া, স্কলারশিপ বাতিলের মতো ঘটনা ঘটছে। অন্যদিকে, আটককৃতদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগে বিচার প্রক্রিয়া চলবে বলে কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে। অক্টোবরে হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ ঘোষণার পর যখন ফিলিস্তিনে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়গুলো সামনে আসতে শুরু করে তখন থেকেই ছোট ছোট দলে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ শুরু হয়। তবে গত ১০ দিনে এ বিক্ষোভ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। এমনকি চলমান পুলিশি ধরপাকড়ের মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ক্যাম্পাসগুলোতে আন্দোলন দিনদিন তীব্র হচ্ছে। ইসরায়েলের গণহত্যার বিরুদ্ধে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভের মুখে গত ডিসেম্বরে আইভি লিগ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধানদের কংগ্রেসে ডাকা হয়। ক্যাম্পাসে আন্দোলনের নামে 'অ্যান্টি-সেমিটিজম' বা 'ইহুদি বিদ্বেষ' ছড়ানো হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে মর্যাদাপূর্ণ আট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধানদের দিকে আঙ্গুল তোলেন দেশটির নীতি নির্ধারকরা। তোপের মুখে পদত্যাগ করেন হার্ভার্ড ও পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট। গত ১৭ এপ্রিল ভোরে যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী তাঁবু খাটিয়ে দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। তাদের মূল দাবি, ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধে সমর্থনকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক লেনদেন বন্ধ করতে হবে। সেদিনই ক্যাম্পাসে 'ইহুদি-বিরোধী' কর্মকাণ্ডের জন্য ক্যাপিটল হিলে ডাক পড়ে কলাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট ড. মিনোচে শাফিকের। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। যার উত্তরে তিনি বলেছেন, 'এ বিষয়ে ইতোমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।' পরদিন নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টে ফোন করেন ড. শাফিক। মূহুর্তের মধ্যেই পুলিশ বাহিনী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মারমুখী আচরণ শুরু করে। এসময় শতাধিক শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। বিবিসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এর আগে সর্বশেষ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢুকে এমন গণহারে গ্রেপ্তার করেছিল পাঁচ দশকেরও বেশি আগে, ভিয়েতনাম যুদ্ধের প্রতিবাদ কর্মসূচির সময়। এ ঘটনার পরই যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফুঁসে উঠেছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। কলাম্বিয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়ে গত ১০ দিনে দেশটির ২৮টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাঁবু খাটিয়ে দাবি আদায়ে অবস্থান শুরু করেছেন হাজারো শিক্ষার্থী। নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি, ইয়েল ইউনিভার্সিটি, এমরি ইউনিভার্সিটি, টেক্সাস ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া (ইউএসসি), নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, রচেস্টার, এমআইটি, প্রিন্সটন, হাভার্ডসহ আন্দোলন চলা প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ই পুলিশ কমবেশি সংঘর্ষে জড়িয়েছে, বিক্ষোভকারীদের আটক করেছে। প্রতিটি ক্যাম্পাসেই সার্বক্ষণিক বিপুল সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি রয়েছে। অন্যদিকে, আন্দোলন বন্ধের অনুরোধ জানিয়ে শিক্ষার্থীদের মেইল পাঠানো থেকে শুরু করে আবাসিক হল বন্ধ, অনলাইন ক্লাস চালুর মতো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন। এ বিষয়ে আন্দোলনরত ইউএসসি'র শিক্ষার্থী ওমর জেগার বিবিসিকে বলেন, 'আমার বিশ্বাস কলাম্বিয়া একটি বৃহত্তর আন্দোলনের সূচনা করেছে। দেশজুড়ে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এখন ক্যাম্পাসে তাঁবু খাটিয়ে অবস্থান করতে শুরু করেছে। আরও অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনে যোগ দেবে। পুলিশই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী।' বাইডেন প্রশাসনের গাজা নীতির কঠোর সমালোচনা করে ডেমোক্র্যাট রাজনীতিবিদ, মিনেসোটা প্রতিনিধি ইলহান ওমর বিবিসিকে বলেন, 'এটি একটি আন্দোলন যা মাত্র ৭০ জন শিক্ষার্থী শুরু করেছিলেন। কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি প্রশাসন পুলিশ ডেকে তাদেরকে দমন করার সিদ্ধান্ত নেয়। এটা স্পষ্টই নীতিমালার লঙ্ঘন, সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটি এখন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে ইস্যুতে পরিণত হয়েছে।' মার্কিন সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একাধিক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ইহুদিদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো। এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহলের প্ররোচনায় শিক্ষার্থীদের পা না দেওয়ার আহ্বান জানান তারা। তবে বিবিসি, টেলিগ্রাফ আল জাজিরায় প্রকাশিত ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ডজন ভিডিওতে দেখা গেছে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি বড় অংশ মুসলিম হলেও সব ধর্ম ও জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য। এমনকি অনেক ইহুদি শিক্ষার্থীও সেখানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এর মধ্যে কলাম্বিয়াতে 'গাজা সলিডারিটি ক্যাম্পমেন্ট' নামে শিক্ষার্থীদের একটি জোট ও নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে 'এনওয়াইইউ প্যালেস্টাইন সলিডারিটি কোয়ালিশন' আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে। 'কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি অ্যাপার্টহেড ডাইভেস্ট (সিইউএডি)', 'স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন' এবং 'ইহুদি ভয়েস ফর পিস' নামে তিনটি ছাত্র সংগঠনের জোট 'গাজা সলিডারিটি ক্যাম্পমেন্ট'। অন্যদিকে 'এনওয়াইইউ প্যালেস্টাইন সলিডারিটি কোয়ালিশন' জোটে আছে 'স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন', 'ফ্যাকাল্টি ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন', 'ল স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন', 'শাট ইট ডাউন এনওয়াইইউ', 'জিউস অ্যাগেইনস্ট জায়ানিজম'সহ আরও ২০ টিরও বেশি ছাত্র সংগঠন। ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে পুলিশি অভিযানে আটক হয়েছেন ডেমোক্র্যাট রাজনীতিবিদ, মিনেসোটা প্রতিনিধি ইলহান ওমরের মেয়ে ও গ্রিন পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জিল স্টেইন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিপুল সংখ্যক নামকরা অধ্যাপক ও অ্যালামনাইরা প্রকাশ্যে এই আন্দোলনের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন। একদিকে স্কলারশিপ, আবাসন সুবিধা ও ছাত্রত্ব বাতিলের ঝুঁকি অন্যদিকে ফৌজদারি ধারায় মামলার ঝুঁকি সত্ত্বেও নিজেদের দাবিতে শক্ত অবস্থান নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। তাদের প্রধান দাবি, ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ থেকে লাভবান হচ্ছে এমন করপোরেশনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কারা বিনিয়োগ করছে তাদের তথ্য এবং অন্যান্য আর্থিক বিষয়ে স্বচ্ছতাও দাবি করেছে শিক্ষার্থীরা। ইসরায়েলি বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রোগ্রামগুলোর সঙ্গে একাডেমিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। ইসরায়েলের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নেওয়া ও ইসরায়েলে বিনিয়োগ বন্ধ করতে হবে। এছাড়া সম্প্রতি ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আটক-হয়রানি বন্ধ করতে হবে। আটকদের মুক্তি দিতে হবে ও আন্দোলনকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবিও জানানো হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, ফিলিস্তিনে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং একাডেমিক প্রতিষ্ঠানের ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে সংঘাত শুরুর পর থেকে ফিলিস্তিনের ৮০ শতাংশ স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ২৬১ জন শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৫ জন অধ্যাপকসহ প্রায় সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বিশ্বাস, এই হামলাগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি ফিলিস্তিনি সমাজের ভিত্তিকে ভেঙে ফেলার জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে করা হচ্ছে। এনওয়াইইউ-এর সিনিয়র শিক্ষার্থী এট্টা (ছদ্মনাম) আল জাজিরাকে বলেন, 'ফিলিস্তিনের শিক্ষা ব্যবস্থাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এটা আমাদের দায়িত্ব ফিলিস্তিনের সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর ধ্বংসের কথা স্বীকার করা। এর বিরুদ্ধে কথা বলা।' আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেমিক উভয় পার্টিই এই আন্দোলন দমনের পক্ষে। ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্মের পর থেকেই ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পাশে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গাজায় যতই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হোক, যতই বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হোক, যুক্তরাষ্ট্র দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ইসরায়েলকে সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর ইসরায়েলকে ৩.৮ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা দিয়ে থাকে। চলমান সংঘাতের মধ্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন এমনকি নিজে ইসরায়েল সফরও করেছেন। গত সপ্তাহে বাইডেন একটি তহবিল প্যাকেজ আইনে সই করেছেন, যা ইসরায়েলকে অতিরিক্ত ১৭ বিলিয়ন ডলার সরবরাহ করবে। এর আগে চার বছরের ক্ষমতার মেয়াদে ডোনাল্ড ট্রাম্পও ইসরায়েলের ঘোর সমর্থক ছিলেন। মার্কিন কংগ্রেসে ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান পার্টির বেশিরভাগ সদস্য প্রকাশ্যেই ইসরায়েলকে সমর্থন করে থাকেন। দেশটির গণমাধ্যমকেও সবসময় ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নিতে দেখা যায়। ফলে, যুক্তরাষ্ট্রের মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর বিপুল অংশগ্রহণে ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান দেশটির নীতিনির্ধারকদের অস্বস্তিতে ফেলেছে। এর আগে আর কখনোই যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনের পক্ষে এত মানুষের প্রত্যক্ষ সমর্থন দেখা যায়নি। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে 'ইহুদি বিরোধী আন্দোলন' তকমা দিয়ে প্রতিরোধ করছে মার্কিন সরকার। তাদের দাবি, আন্দোলনকারীরা অ্যান্টি-সেমিটিজম বা ইহুদি বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে এবং তাদের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ইহুদি নাগরিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইহুদি শিক্ষার্থীরা হুমকির মুখে পড়ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো ব‌াইডেন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের 'ইহুদি-বিদ্বেষী আন্দোলনকারীদের' প্রতি নিন্দা জানিয়েছেন। এ আন্দোলনকে 'বিপজ্জনক' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'কোনো কলেজ ক্যাম্পাস, আমাদের দেশের কোথাও এর কোনো স্থান নেই।' এ বিষয়ে পৃথক বিবৃতি দিয়েছে হোয়াইট হাউস। এতে বলা হয়েছে, 'ইহুদি শিক্ষার্থী এবং ইহুদি সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে হামলার ভয় দেখাচ্ছে' আন্দোলনকারীরা। নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস এবং নিউইয়র্ক স্টেটের গভর্নর ক্যাথি হোচুলও আন্দোলনের নিন্দা জানিয়েছেন। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউইয়র্কের ক্যাম্পাসে গিয়ে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন বলেছেন, 'শিক্ষার্থীদের বলব ক্লাসে ফিরে যাও। আমরা বাকস্বাধীনতায় শ্রদ্ধা করি। আমরা চিন্তার বৈচিত্র্যকে সম্মান করি। কিন্তু এটা করার একটা উপায় আছে, আইনত পদ্ধতি আছে। তোমরা যা করছ, সেটা না।' অন্যদিকে, এ আন্দোলনকে বাইডেন প্রশাসনের ব্যর্থতা বলে দাবি করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আন্দোলনকারীদের আরও শক্ত হাতে দমন করা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তবে গণমাধ্যমসহ রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও সরকারের সব পক্ষ শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে 'হামাসের প্রতি সহানুভূতিশীল', 'ইহুদি বিদ্বেষী', 'সন্ত্রাসী' হিসেবে চিত্রিত করে ইসরায়েলপন্থী সংগঠন ও কমিউনিটিকে তাদের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ করে তোলা হয়েছে। এটি 'ইহুদি বিরোধী আন্দোলন' এমন দাবি তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কারভাবে তুলে ধরছেন আন্দোলনকারীরা। তারা বলছেন, 'আমরা গণহত্যা বিরোধী, ইহুদি বিরোধী নই।' ফিলিস্তিনে গণহত্যার বিরুদ্ধে আন্দোলন করার কারণে দেশসেরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে নিন্দা চলছে। এতদিন ধরে চীন কিংবা রাশিয়ার বিরুদ্ধে দমন নিপীড়নের বিরোধিতা করে আসা মার্কিন সরকারের এ সিদ্ধান্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জুড়ে তুমুল সমালোচনা চলছে। জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। ছবি: রয়টার্স যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এই আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, যুক্তরাজ্যসহ আরও কয়েকটি দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়, সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়, কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ফ্রান্সের প্যারিস ইনস্টিটিউট অব পলিটিক্যাল স্টাডিস, সরবন বিশ্ববিদ্যালয়, ইতালির স্যাপিনজা বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাজ্যের লিড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন, ওয়ারউইক ইউনিভার্সিটিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এই আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, যুক্তরাজ্যসহ আরও কয়েকটি দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়, সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়, কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ফ্রান্সের প্যারিস ইনস্টিটিউট অব পলিটিক্যাল স্টাডিস, সরবন বিশ্ববিদ্যালয়, ইতালির স্যাপিনজা বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাজ্যের লিড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন, ওয়ারউইক ইউনিভার্সিটিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে।
আন্দোলনরত কয়েকশ শিক্ষার্থীর জমায়েতের মধ্যে ঢুকে সংঘর্ষে জড়ানো, টেনে হিঁচড়ে শিক্ষার্থীদের গণহারে গ্রেপ্তার, নারী অধ্যাপককে মাটিতে ফেলে হাতকড়া পরানো—মার্কিন পুলিশের এমন কর্মকাণ্ডে বিস্মিত গোটা বিশ্ব। মত প্রকাশের অধিকার, প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ প্রদর্শনের অধিকারে সর্বদা সোচ্চার যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পুলিশি অভিযান ও ধরপাকড় দেশটির সংবিধান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা, ভাবমূর্তির সঙ্গে একেবারেই সাংঘর্ষিক।
বাফেলোতে গুলিতে ২ বাংলাদেশি নিহত: অভিযুক্ত গ্রেপ্তার
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বাফেলো শহরে দুই বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মার্কিন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম এবিসির সহযোগী প্রতিষ্ঠান ডব্লিউকেবিউব্লিউ টিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ঘটনায় সোমবার ডেল ও কামিন্স নামে ৩১ বছর বয়সী একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে তার বিরুদ্ধে সেকেন্ড ডিগ্রি চার্জ গঠন করা হয়েছে। বাফেলোর মেয়র বায়রন ব্রাউন বলেছেন, 'ঘটনার মোটিফ দেখে মনে হচ্ছে না যে, বাবুল ও ইউসুফকে টার্গেট করা হয়েছিল। তবে দুটি পরিবার এখন শোকগ্রস্ত এবং তাদের প্রিয়জনদের কবর দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।' শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাফেলো শহরের পূর্বাঞ্চলে হ্যাজেলউড এলাকার জেনার ও কিলহপার স্ট্রিটের হান্ড্রেড ব্লকে কুমিল্লার বাবুল উদ্দিন নিজের বাড়ি সংস্কারের কাজ করছিলেন। সঙ্গে ছিলেন সিলেটের ইউসুফ মিয়া। সেসময় দুর্বৃত্তরা তাদের ওপর গুলি চালায়। এ ঘটনায় বাফেলোর বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যে ক্ষোভের জন্ম নেয়। তারা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে বাফেলোতে বিক্ষোভও করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বাফেলো শহরে দুই বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ইরানের পরমাণু কর্মসূচি আশীর্বাদ না অভিশাপ?
'দ্য ওয়ার্ল্ড উইল রিমেম্বার দিস ডে'— পরমাণু বোমার জনক হিসেবে পরিচিত ড. জে রবার্ট ওপেনহেইমারের এমন সগোক্তি বিশ্ববাসী স্মরণ করছে ভিন্নভাবে। ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমায় পরমাণু বোমা ফেলার মধ্য দিয়ে মানবসভ্যতার ইতিহাসে যে জঘন্যতম ঘটনা সংগঠিত হয় তার স্মরণে সারাবিশ্বে পালিত হয় 'হিরোশিমা দিবস'। এ বছর সেরা ছবিসহ সাত বিভাগে অস্কার জেতা পরিচালক ক্রিস্টোফার নোলানের 'ওপেনহেইমার'র কল্যাণে বিশ্ববাসী আরও ভালোভাবে জেনেছেন বিশ্বরাজনীতিতে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা অর্জনের ক্ষেত্রে পরমাণু বোমার গুরুত্ব কতখানি। জেনেছেন—এই গণবিধ্বংসী অস্ত্র অর্জন করতে কতটা কাঠখড় পোহাতে হয়। পরমাণু বোমার এমন জনবিধ্বংসী ভূমিকার প্রেক্ষাপটে গত ২১ এপ্রিল ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট'র এক সংবাদ শিরোনামে বলা হয়—'ইরান, এরপর আঘাত আসতে পারে পরমাণু কেন্দ্রগুলোয়'। বলাই বাহুল্য, সামরিক দিক বিবেচনায় একটি দেশের মর্যাদা বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরতে 'পরমাণু বোমা'র ভূমিকা অপরিসীম। তাই অপেক্ষাকৃত দুর্বল অর্থনীতির দেশ উত্তর কোরিয়াকে সমীহ করতে হয় অপেক্ষাকৃত সবল অর্থনীতির দেশ দক্ষিণ কোরিয়াকেও। আবার শুধু পরমাণু বোমার কারণেই দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ ভারতকেও সমঝে চলতে হয় ভঙ্গুর অর্থনীতির পাকিস্তানকে। ঠিক একই ভাবনায় মধ্যপ্রাচ্যে 'একমাত্র পরমাণু শক্তিধর' দেশ হিসেবে ইসরায়েলকে দেখা হয় ভিন্ন দৃষ্টিতে। তাই এ প্রশ্ন উঠতেই পারে যে—তেল আবিবকে টেক্কা দিতে তেহরানও কি সেই পথেই হাঁটছে? আবার ইরানের দীর্ঘদিনের পরমাণু কর্মসূচি দেশটির জন্য আশীর্বাদ না কি অভিশাপ—এমন প্রশ্ন জাগাও অস্বাভাবিক নয়। বিপ্লবের আগে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় ইরানে পরমাণু কর্মসূচির শুরু সেই ১৯৫০ এর দশকে। উপসাগরীয় দেশটির পরমাণু কর্মসূচির ধারাবাহিকতা নিয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট অব পিস'র প্রতিবেদনে বলা হয়, পৃথিবীতে আরও কোনো দেশ যেন সভ্যতা বিনাশকারী পরমাণু বোমা তৈরি না করে তাই হিরোশিমা ও নাগাসাকি ধ্বংসের পর যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দেয় 'শান্তির জন্য পরমাণু' কর্মসূচির। ১৯৫৭ সালের ৫ মার্চ এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে ওয়াশিংটন ও তেহরান বেসামরিক পরমাণু সহযোগিতা চুক্তি সই করে। চুক্তি অনুসারে ইরানকে কারিগরি সহায়তা ও পরিশোধিত ইউরেনিয়াম সরবরাহ করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর ১৯৫৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইরানের শাসক শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভী তেহরান পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলেন। ১৯৬৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র তেহরান পরমাণুকেন্দ্রে প্রথম গবেষণা রিঅ্যাকটর পাঠায়। পাঁচ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম সেই রিঅ্যাকটরটি এখনো কার্যকর। ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট অব পিস'র তথ্য বলছে, ১৯৬৮ সালের ১ জুলাই ইরান পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তিতে (এনপিটি) সই করে। ১৯৭০ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশটির পার্লামেন্ট চুক্তিটির অনুমোদন দেয়। এর অধীনে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বৈধতা পায়। ১৯৭৪ সালের ১৫ মে ইরান জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক পরমাণুশক্তি এজেন্সির (আইএইএ) সঙ্গে পরমাণু নিরাপত্তা চুক্তি করে। সেই চুক্তির মাধ্যমে আইএইএ ইরানের কেন্দ্রগুলোর শান্তিপূর্ণ কাজে পরমাণু গবেষণা করছে কি না তা পরিদর্শনের অনুমতি পায়। সেই বছরের নভেম্বরে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানি ইরানের বুশেহরে ১২শ মেগাওয়াটের লাইট ওয়াটার রিঅ্যাকটর নির্মাণে রাজি হয়। নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ১৯৭৫ সালের আগস্টে। ইরানের জ্বালানিশিল্পে বৈচিত্র্য আনতে পূর্ণ উদ্যমে পরমাণু কর্মসূচি চালানোর বিষয়ে রেজা শাহর পরিকল্পনাকে সমর্থন জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ড। শাহ চেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা পরমাণু জ্বালানি প্রক্রিয়াজাত করে ২৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে। শাহের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন জানিয়ে ১৯৭৬ সালের ২০ এপ্রিল ন্যাশনাল সিকিউরিটি ডিসিশন মেমোরেন্ডাম জারি করেন প্রেসিডেন্ট ফোর্ড। তিনি ইরানের ২৩ পরমাণু রিঅ্যাকটর তৈরির পরিকল্পনায় সহায়তার ঘোষণাও দেন। কিন্তু, বাধ সাধে তার প্রশাসন। ফোর্ড প্রশাসন চায়নি শাহের অধীনে ইরান পরমাণু গবেষণা নিয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করুক। এমন পরিস্থিতিতে শুরু হয় ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বন্দ্ব। ১৯৭৭ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার সেই দ্বন্দ্ব দূর করার চেষ্টা করেন। পরের বছর জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে 'সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু'র মর্যাদা দিলেও ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের পর পুরোপুরি পাল্টে যায় দৃশ্যপট। তেহরানের গবেষণা কেন্দ্রে জ্বালানি পাঠানো বন্ধ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ইরান খরচ বহনে ব্যর্থ হওয়ায় পশ্চিম জার্মানিও সরে আসে বুশেহর থেকে। বিপ্লব-পরবর্তী ইরানে পরমাণু কর্মসূচি ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা আটলান্টিক কাউন্সিল'র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামি বিপ্লবের পর আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে এত বেশি আলোচনা হচ্ছে যে অবস্থা দেখে মনে হয়, ইসলামি প্রজাতন্ত্রটিই চায় পরমাণু বোমা তৈরি করতে। অথচ, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যে জানা গেছে যে ১৯৭৪ সালের জুনে শাহ রেজা পাহলভী বলেছিলেন, 'এই অঞ্চলে কেউ পরমাণু বোমা তৈরি করলে ইরানও তা করবে।' এমনকি, কত দ্রুত তা করা হবে যে বিষয়ে কারো কোনো ধারণাই নেই বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। ব্যক্তিগতভাবে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে বেশি আগ্রহী শাহ পাহলভী মনে করতেন, এই কর্মসূচির প্রাথমিক উদ্দেশ্য জ্বালানি ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য আনা। তবে 'আঞ্চলিক সামরিক ভারসাম্যে পরিবর্তন' আনার পথও খোলা ছিল। ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ হয়ে যায়। বিপ্লবের নেতারা মনে করতেন, এটি খুবই ব্যয়বহুল। শুধু তাই নয়, পরমাণু প্রযুক্তি ইরানকে পশ্চিমের ওপর নির্ভর করে রাখবে। এগুলো বিপ্লবের মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ১৯৮০ সালে শুরু হওয়া প্রতিবেশী ইরাকের সঙ্গে আট বছরব্যাপী যুদ্ধ আবারও সব হিসাব পাল্টে দেয়। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর ভাষ্য—ইরানি সেনাদের ওপর ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন রাসায়নিক বোমা হামলা চালালে তেহরান পরমাণু কর্মসূচি আবার চালু করে। সংস্থাটি জানায়, ১৯৮২ সালে ইরান পরমাণুবিষয়ক বেশকিছু সম্মেলন আয়োজনের পাশাপাশি ছোট পরিসরে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করে। এরপর, ইরান প্রতিবেশী পাকিস্তানের 'পরমাণু বোমার জনক' আবদুল কাদির খানের সহায়তায় পরমাণু বোমা তৈরির উপাদান সেন্ট্রিফিউজ কিনতে শুরু করে। ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট অব পিস'র তথ্য অনুসারে—১৯৯০ সালের ৯ অক্টোবর ইরান বুশেহর পরমাণু প্রকল্প আবারও চালুর ঘোষণা দেয়। ১৯৯২ সালের ২৫ আগস্ট ইরান পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে সহায়তার জন্য সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে সদ্য তৈরি হওয়া রুশ ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তি করে। সেই চুক্তিতে একটি নতুন পরমাণু প্ল্যান্ট তৈরির বিষয়ও ছিল। ১৯৯৫ সালে রাশিয়ার পরামণুশক্তি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আরেকটি চুক্তি করে ইরান। সেখানে আইএইএর নজরদারিতে বুশেহরে একটি লাইট ওয়াটার রিঅ্যাকটর তৈরির কথা বলা হয়। ২০১০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ইরানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ ঘোষণা দেন যে তার দেশ ২০ শতাংশ পরিশোধিত ইউরেনিয়াম উৎপাদন করেছে। তেহরান আরও বেশি মাত্রায় ইউরেনিয়াম পরিশোধন করতে সক্ষম বলেও জানান তিনি। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ধোঁয়াশা ইরানের পরমাণু গবেষণায় অগ্রগতি নিয়ে পশ্চিমের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সবসময় 'অতিরঞ্জিত' তথ্য দিয়েছে বলে মন্তব্য করা হয়েছে আটলান্টিক কাউন্সিল'র এক প্রতিবেদনে। ১৯৮৪ সালে সিআইএ পূর্বাভাস দিয়ে বলেছিল, ইরান পরমাণু বোমা বানানোর দ্বারপ্রান্তে। তবে সেসময় যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স কাউন্সিল জানায়, পরমাণু বোমা বানাতে ইরানের আরও কয়েক বছর এমনকি এক দশকও লেগে যেতে পারে। বাস্তবতা হচ্ছে, ২০২৪ সালে এসেও ইরান পরমাণু বোমা তৈরি করতে পারেনি। গত বছরের ১ অক্টোবর জেরুজালেম পোস্ট জানায়, ইরান দুই সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে পরমাণু বোমা বানানোর উপযোগী উপাদান উৎপাদন করতে সক্ষম। আবার একই প্রতিবেদনে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বলা হয়, 'যুক্তরাষ্ট্র মনে করে ইরান এই সময়ে পরমাণু বোমা বানানোর পথে হাঁটছে না।' ইরানের পরমাণু বোমাকে ইসরায়েল বিশ্ববাসীর জন্য হুমকি মনে করলেও যুক্তরাষ্ট্র মনে করে এ ক্ষেত্রে চীন ও রাশিয়া বড় হুমকি। সম্প্রতি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক মতামতধর্মী নিবন্ধের শিরোনাম করা হয়, 'ইরানকে পরমাণু গবেষণায় উৎসাহ দিচ্ছে চীন ও রাশিয়া'। পরমাণু গবেষণায় গতি আনতে তেহরান দুই মিত্র মস্কো ও বেইজিংয়ের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াচ্ছে বলে এতে জানানো হয়। গত ৮ এপ্রিল সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বল্টন যুক্তরাজ্যের 'টাইমস রেডিও'কে জানান যে, তিনি মনে করেন—উত্তর কোরিয়ার সহায়তায় ইরান ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পরমাণু হুমকিতে পরিণত হতে পারে। অথচ ২০১৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সিএনএন জানায়, তেহরান যে বর্তমানে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে কাজ করছে এ বিষয়ে 'সুনিশ্চিত সাক্ষ্যপ্রমাণ' নেই বললেই চলে। গত ১৯ এপ্রিল সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, আইএইএ বলেছে—কয়েকটি বোমা বানানোর মতো উপকরণ ইরানের হাতে আছে…। সংস্থাটির ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের শেষে ইরান পরমাণুর ৬০ শতাংশ পরিশোধনের গতি কিছুটা ধীর করেছে। এ কথা সবাই জানেন, ২০২১ সালেই ইরান পরমাণুর ৬০ শতাংশ পরিশোধনের ঘোষণা দিয়েছিল। আইএইএর মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসির অভিযোগ, পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরানের যতটা সহযোগিতা করা প্রয়োজন তা করছে না। গত ২২ এপ্রিল জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে'কে বলেন, একটি দেশ বোমা বানানোর সমপরিমাণ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করলেই যে সেই দেশ বোমা বানিয়ে ফেলল বিষয়টি এত সহজ নয়। বোমা বানানোর জন্য আরও অনেক উপকরণের প্রয়োজন। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি প্রসঙ্গে তার মন্তব্য, 'তেহরান শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক কাজে ব্যবহারের জন্য ইউরেনিয়াম পরিশোধিত করছে। কিন্তু, এর জন্য কত পরিমাণ পরিশোধন প্রয়োজন সেটাই প্রশ্ন।' তার মতে, 'ইরান যে পরিমাণে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে তা বোমা বানানোর জন্য উপযোগী। তাই বলে ইরান যে বোমা বানাতে যাচ্ছে তা বলা যাবে না।' ইরানের পরমাণু চুক্তি ও বিশ্বশক্তির অবস্থান জাতিসংঘের পরমাণু শক্তি সংস্থা আইএইএ'র ওয়েবসাইটে দেখা যায়, ২০০৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আইএইএ'র তৎকালীন মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলবারাদি ইরানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ খাতামির ও দেশটির পরমাণু কর্মসূচির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে তেহরানে যান। সেখান থেকে ফিরে এসে পরের মাসে তিনি সংস্থাটির গভর্নর বৈঠকে বিষয়টি তুলে ধরেন। এরপর ধীরে ধীরে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে যুক্ত হয়ে পড়ে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো। দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে ২০১৫ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, পাঁচ বিশ্বশক্তি ও জার্মানির সঙ্গে ইরানের পরমাণু নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি হয়। বিশ্বশক্তির সঙ্গে পরমাণু চুক্তি ভেঙে যাওয়ার পর তেহরানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুসাইন আমির-আব্দোল্লাহিয়ান। রয়টার্স ফাইল ফটো চুক্তি অনুসারে ইরান পরমাণু সমৃদ্ধকরণ, গবেষণা ও উন্নয়ন আগামী ১৫ বছরের জন্য সীমিত করবে। এ ছাড়াও, আগামী ২৫ বছর ইরানের পরমাণু কর্মসূচি আইএইএর নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকবে। বিনিময়ে ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা পাঁচ বছর ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের নিষেধাজ্ঞা আট বছরের জন্য শিথিল করা হবে। পরে ২০১৮ সালের ৮ মে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে এই চুক্তি থেকে সরিয়ে নিলে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আবারও বৈশ্বিক সংকট শুরু হয়। এখন সংকট এতটাই বেড়েছে যে, আশঙ্কা হচ্ছে—যেকোনো সময় ইরানের পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রগুলোয় হামলা হতে পারে। এ জন্য সন্দেহের আঙ্গুল মূলত ইসরায়েলের দিকে। ইরানের পরমাণু প্ল্যান্টে ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে আইএইএর মহাপরিচালকের বক্তব্য, 'এমনটি হলে তা হবে আন্তর্জাতিক আইনের ভয়ঙ্কর লঙ্ঘন। কোনো দেশই কোনো দেশের পরমাণু প্ল্যান্টে হামলা চালাতে পারে না।'এমনটি যেন না নয় সে জন্যই বিশ্ববাসী গত প্রায় ৭০ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে বলেও তিনি স্মরণ করিয়ে দেন। আশীর্বাদ না অভিশাপ? বিজ্ঞান 'আশীর্বাদ না অভিশাপ' তা নিয়ে বিতর্ক বিশ্বব্যাপী। এ কথা অস্বীকার করা উপায় নেই—পরমাণু শক্তির সুফল মানবজাতিকে একদিকে যেমন সভ্যতার শিখরে তুলে আনতে পারে অন্যদিকে এর অপব্যবহার মুহূর্তেই পৃথিবীকে বানিয়ে দিতে পারে মৃত গ্রহে। তাই হয়ত ড. ওপেনহেইমার আক্ষেপ করে বলেছিলেন, বিশ্ববাসী একদিন তাকে 'দ্য ডেস্ট্রয়ার অব ওয়ার্ল্ডস' বলে ঘৃণা করবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ১৯৪২ সালে যখন 'ম্যানহাটন প্রজেক্ট'র মাধ্যমে লস আলামোস ল্যাবরেটরিতে পরমাণু বোমা বানানোর প্রক্রিয়া চলছে তখন পরমাণু বোমার ধ্বংসের ব্যাপ্তি বোঝাতে গিয়ে ওই প্রকল্প থেকে বেরিয়ে আসা এক সহকর্মী ড. ওপেনহেইমারকে বলেছিলেন, 'দিস ইজ নট অ্যা নিউ ওয়েপন। ইট ইস অ্যা নিউ ওয়ার্ল্ড'। পরমাণু বোমার ধ্বংসলীলা দেখে মানুষ এক নতুন পৃথিবী গড়ার দিকে মনোযোগ দেবে এমনটি আশা করা হলেও ঘটেছে বিপরীত ঘটনা। নিজেদের জাতিগত আভিজাত্য তুলে ধরতে শক্তিশালী ও সক্ষম দেশগুলো পরমাণু বোমার অধিকারী হওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে। আবার, দেশে দেশে শুরু হয় 'শান্তিপূর্ণ কাজে' পরমাণু গবেষণাও। গত ৮ এপ্রিল ইরানি সংবাদমাধ্যম তেহরান টাইমস জানায়—ইরানের জাতীয় পরমাণু প্রযুক্তি দিবস উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ এসলামি বলেন, 'বাহ্যিক চাপে আমরা গর্তে ঢুকে যাব না।' পরমাণু গবেষণায় দেশটির অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি জানান, ২০২৩ সালে ইরান মেডিক্যাল ও রেডিওফার্মাসিউটিক্যাল খাতে ১৫টি নতুন সাফল্য পেয়েছে। তার দাবি, দেশটি রেডিওফার্মাসিউটিক্যাল খাতে আলফা রশ্মি ব্যবহার নিয়ে আলোচনাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। সারাবিশ্বে ইরান এই প্রথম এমন মাইলফলক সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, 'ক্যানসার রোগীদের সফল চিকিৎসায় আমাদের অর্জিত জ্ঞান ও উদ্ভাবন নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে আছে। আমরা সেই ধারা বজায় রেখে চলছি।' ক্যানসারাস টিউমার ও নিউরোলগিক্যাল টিউমার দূর করতে ইরানের রেডিওফার্মাসিউটিক্যালের কার্যকারিতাও তুলে ধরেন তিনি। অপর এক অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ এসলামি ইরানের পরমাণু প্ল্যান্টের সম্প্রসারণের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে বলেন, 'বুশেহর, খুজেস্তান ও মাকরানে নতুন প্ল্যান্ট তৈরি করা হবে।' ইরানের জাতীয় পরমাণু শক্তি দিবসে তেহরানে সেন্ট্রিফিউজ দেখানো হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো গত ২১ ফেব্রুয়ারি ইসলামি বিপ্লবের ৪৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান দাবি করেন, পরমাণু গবেষণায় কয়েকটি বিভাগে ইরানের অবস্থান বিশ্বে শীর্ষ পাঁচের মধ্যে আছে। এত সাফল্যের পরও পরমাণু গবেষণার জন্য বেশ মূল্য দিতে হচ্ছে ইরানকে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৭ সালের পর থেকে ইরানের অন্তত ছয় শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করা হয়েছে। এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য তেহরান বরাবর তেল আবিব ও ওয়াশিংটনকে দায়ী করে আসলেও তারা তা স্বীকার বা অস্বীকার করেনি। সর্বশেষ, ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর ইরানের প্রধান পরমাণুবিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহকে রাজধানী তেহরানে দূর নিয়ন্ত্রিত অস্ত্র ব্যবহার করে হত্যা করা হয়। এ সংক্রান্ত বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিমের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মনে করে যে ফাখরিজাদেহ ইরানের গোপন পরমাণু বোমা তৈরির কাজে নিয়োজিত ছিলেন। শুধু পরমাণু বিজ্ঞানীই নয়, দেশটির পরমাণু কেন্দ্রগুলোতেও নানান সময় 'নাশকতামূলক' হামলা হয়েছে। ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট অব পিস সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের পর থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ইরানের পরমাণুকেন্দ্রগুলোকে লক্ষ্য করে অন্তত দুই ডজন হামলা হয়েছে। আছে সাইবার অ্যাটাকও। গত বছরের ২৮ জানুয়ারিও মধ্যরাতে মধ্য ইস্পাহানে আত্মঘাতী ড্রোন হামলার শব্দ শোনা যায়। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রশ্ন জাগে—খনিজ জ্বালানি সমৃদ্ধ ইরানের সাফল্যের 'মেরুদণ্ড' হিসেবে পরিচিত যে পরমাণু গবেষণার জন্য দেশটিকে প্রায় অর্ধ শতক ধরে চরম মূল্য দিতে হচ্ছে তা দেশটির জন্য আশীর্বাদ না অভিশাপ? ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা আটলান্টিক কাউন্সিল'র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামি বিপ্লবের পর আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে এত বেশি আলোচনা হচ্ছে যে অবস্থা দেখে মনে হয়, ইসলামি প্রজাতন্ত্রটিই চায় পরমাণু বোমা তৈরি করতে। অথচ, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যে জানা গেছে যে ১৯৭৪ সালের জুনে শাহ রেজা পাহলভী বলেছিলেন, 'এই অঞ্চলে কেউ পরমাণু বোমা তৈরি করলে ইরানও তা করবে।' এমনকি, কত দ্রুত তা করা হবে যে বিষয়ে কারো কোনো ধারণাই নেই বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। ব্যক্তিগতভাবে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে বেশি আগ্রহী শাহ পাহলভী মনে করতেন, এই কর্মসূচির প্রাথমিক উদ্দেশ্য জ্বালানি ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য আনা। তবে 'আঞ্চলিক সামরিক ভারসাম্যে পরিবর্তন' আনার পথও খোলা ছিল। ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ হয়ে যায়। বিপ্লবের নেতারা মনে করতেন, এটি খুবই ব্যয়বহুল। শুধু তাই নয়, পরমাণু প্রযুক্তি ইরানকে পশ্চিমের ওপর নির্ভর করে রাখবে। এগুলো বিপ্লবের মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ১৯৮০ সালে শুরু হওয়া প্রতিবেশী ইরাকের সঙ্গে আট বছরব্যাপী যুদ্ধ আবারও সব হিসাব পাল্টে দেয়। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর ভাষ্য—ইরানি সেনাদের ওপর ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন রাসায়নিক বোমা হামলা চালালে তেহরান পরমাণু কর্মসূচি আবার চালু করে। সংস্থাটি জানায়, ১৯৮২ সালে ইরান পরমাণুবিষয়ক বেশকিছু সম্মেলন আয়োজনের পাশাপাশি ছোট পরিসরে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করে। এরপর, ইরান প্রতিবেশী পাকিস্তানের 'পরমাণু বোমার জনক' আবদুল কাদির খানের সহায়তায় পরমাণু বোমা তৈরির উপাদান সেন্ট্রিফিউজ কিনতে শুরু করে। ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট অব পিস'র তথ্য অনুসারে—১৯৯০ সালের ৯ অক্টোবর ইরান বুশেহর পরমাণু প্রকল্প আবারও চালুর ঘোষণা দেয়। ১৯৯২ সালের ২৫ আগস্ট ইরান পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে সহায়তার জন্য সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে সদ্য তৈরি হওয়া রুশ ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তি করে। সেই চুক্তিতে একটি নতুন পরমাণু প্ল্যান্ট তৈরির বিষয়ও ছিল। ১৯৯৫ সালে রাশিয়ার পরামণুশক্তি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আরেকটি চুক্তি করে ইরান। সেখানে আইএইএর নজরদারিতে বুশেহরে একটি লাইট ওয়াটার রিঅ্যাকটর তৈরির কথা বলা হয়। ২০১০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ইরানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ ঘোষণা দেন যে তার দেশ ২০ শতাংশ পরিশোধিত ইউরেনিয়াম উৎপাদন করেছে। তেহরান আরও বেশি মাত্রায় ইউরেনিয়াম পরিশোধন করতে সক্ষম বলেও জানান তিনি। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ধোঁয়াশা ইরানের পরমাণু গবেষণায় অগ্রগতি নিয়ে পশ্চিমের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সবসময় 'অতিরঞ্জিত' তথ্য দিয়েছে বলে মন্তব্য করা হয়েছে আটলান্টিক কাউন্সিল'র এক প্রতিবেদনে। ১৯৮৪ সালে সিআইএ পূর্বাভাস দিয়ে বলেছিল, ইরান পরমাণু বোমা বানানোর দ্বারপ্রান্তে। তবে সেসময় যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স কাউন্সিল জানায়, পরমাণু বোমা বানাতে ইরানের আরও কয়েক বছর এমনকি এক দশকও লেগে যেতে পারে। বাস্তবতা হচ্ছে, ২০২৪ সালে এসেও ইরান পরমাণু বোমা তৈরি করতে পারেনি। গত বছরের ১ অক্টোবর জেরুজালেম পোস্ট জানায়, ইরান দুই সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে পরমাণু বোমা বানানোর উপযোগী উপাদান উৎপাদন করতে সক্ষম। আবার একই প্রতিবেদনে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বলা হয়, 'যুক্তরাষ্ট্র মনে করে ইরান এই সময়ে পরমাণু বোমা বানানোর পথে হাঁটছে না।' ইরানের পরমাণু বোমাকে ইসরায়েল বিশ্ববাসীর জন্য হুমকি মনে করলেও যুক্তরাষ্ট্র মনে করে এ ক্ষেত্রে চীন ও রাশিয়া বড় হুমকি। সম্প্রতি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক মতামতধর্মী নিবন্ধের শিরোনাম করা হয়, 'ইরানকে পরমাণু গবেষণায় উৎসাহ দিচ্ছে চীন ও রাশিয়া'। পরমাণু গবেষণায় গতি আনতে তেহরান দুই মিত্র মস্কো ও বেইজিংয়ের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াচ্ছে বলে এতে জানানো হয়। গত ৮ এপ্রিল সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বল্টন যুক্তরাজ্যের 'টাইমস রেডিও'কে জানান যে, তিনি মনে করেন—উত্তর কোরিয়ার সহায়তায় ইরান ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পরমাণু হুমকিতে পরিণত হতে পারে। অথচ ২০১৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সিএনএন জানায়, তেহরান যে বর্তমানে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে কাজ করছে এ বিষয়ে 'সুনিশ্চিত সাক্ষ্যপ্রমাণ' নেই বললেই চলে। গত ১৯ এপ্রিল সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, আইএইএ বলেছে—কয়েকটি বোমা বানানোর মতো উপকরণ ইরানের হাতে আছে…। সংস্থাটির ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের শেষে ইরান পরমাণুর ৬০ শতাংশ পরিশোধনের গতি কিছুটা ধীর করেছে। এ কথা সবাই জানেন, ২০২১ সালেই ইরান পরমাণুর ৬০ শতাংশ পরিশোধনের ঘোষণা দিয়েছিল। আইএইএর মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসির অভিযোগ, পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরানের যতটা সহযোগিতা করা প্রয়োজন তা করছে না। গত ২২ এপ্রিল জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে'কে বলেন, একটি দেশ বোমা বানানোর সমপরিমাণ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করলেই যে সেই দেশ বোমা বানিয়ে ফেলল বিষয়টি এত সহজ নয়। বোমা বানানোর জন্য আরও অনেক উপকরণের প্রয়োজন। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি প্রসঙ্গে তার মন্তব্য, 'তেহরান শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক কাজে ব্যবহারের জন্য ইউরেনিয়াম পরিশোধিত করছে। কিন্তু, এর জন্য কত পরিমাণ পরিশোধন প্রয়োজন সেটাই প্রশ্ন।' তার মতে, 'ইরান যে পরিমাণে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে তা বোমা বানানোর জন্য উপযোগী। তাই বলে ইরান যে বোমা বানাতে যাচ্ছে তা বলা যাবে না।' ইরানের পরমাণু চুক্তি ও বিশ্বশক্তির অবস্থান জাতিসংঘের পরমাণু শক্তি সংস্থা আইএইএ'র ওয়েবসাইটে দেখা যায়, ২০০৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আইএইএ'র তৎকালীন মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলবারাদি ইরানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ খাতামির ও দেশটির পরমাণু কর্মসূচির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে তেহরানে যান। সেখান থেকে ফিরে এসে পরের মাসে তিনি সংস্থাটির গভর্নর বৈঠকে বিষয়টি তুলে ধরেন। এরপর ধীরে ধীরে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে যুক্ত হয়ে পড়ে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো। দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে ২০১৫ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, পাঁচ বিশ্বশক্তি ও জার্মানির সঙ্গে ইরানের পরমাণু নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি হয়। চুক্তি অনুসারে ইরান পরমাণু সমৃদ্ধকরণ, গবেষণা ও উন্নয়ন আগামী ১৫ বছরের জন্য সীমিত করবে। এ ছাড়াও, আগামী ২৫ বছর ইরানের পরমাণু কর্মসূচি আইএইএর নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকবে। বিনিময়ে ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা পাঁচ বছর ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের নিষেধাজ্ঞা আট বছরের জন্য শিথিল করা হবে। পরে ২০১৮ সালের ৮ মে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে এই চুক্তি থেকে সরিয়ে নিলে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আবারও বৈশ্বিক সংকট শুরু হয়। এখন সংকট এতটাই বেড়েছে যে, আশঙ্কা হচ্ছে—যেকোনো সময় ইরানের পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রগুলোয় হামলা হতে পারে। এ জন্য সন্দেহের আঙ্গুল মূলত ইসরায়েলের দিকে। ইরানের পরমাণু প্ল্যান্টে ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে আইএইএর মহাপরিচালকের বক্তব্য, 'এমনটি হলে তা হবে আন্তর্জাতিক আইনের ভয়ঙ্কর লঙ্ঘন। কোনো দেশই কোনো দেশের পরমাণু প্ল্যান্টে হামলা চালাতে পারে না।'এমনটি যেন না নয় সে জন্যই বিশ্ববাসী গত প্রায় ৭০ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে বলেও তিনি স্মরণ করিয়ে দেন। আশীর্বাদ না অভিশাপ? বিজ্ঞান 'আশীর্বাদ না অভিশাপ' তা নিয়ে বিতর্ক বিশ্বব্যাপী। এ কথা অস্বীকার করা উপায় নেই—পরমাণু শক্তির সুফল মানবজাতিকে একদিকে যেমন সভ্যতার শিখরে তুলে আনতে পারে অন্যদিকে এর অপব্যবহার মুহূর্তেই পৃথিবীকে বানিয়ে দিতে পারে মৃত গ্রহে। তাই হয়ত ড. ওপেনহেইমার আক্ষেপ করে বলেছিলেন, বিশ্ববাসী একদিন তাকে 'দ্য ডেস্ট্রয়ার অব ওয়ার্ল্ডস' বলে ঘৃণা করবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ১৯৪২ সালে যখন 'ম্যানহাটন প্রজেক্ট'র মাধ্যমে লস আলামোস ল্যাবরেটরিতে পরমাণু বোমা বানানোর প্রক্রিয়া চলছে তখন পরমাণু বোমার ধ্বংসের ব্যাপ্তি বোঝাতে গিয়ে ওই প্রকল্প থেকে বেরিয়ে আসা এক সহকর্মী ড. ওপেনহেইমারকে বলেছিলেন, 'দিস ইজ নট অ্যা নিউ ওয়েপন। ইট ইস অ্যা নিউ ওয়ার্ল্ড'। পরমাণু বোমার ধ্বংসলীলা দেখে মানুষ এক নতুন পৃথিবী গড়ার দিকে মনোযোগ দেবে এমনটি আশা করা হলেও ঘটেছে বিপরীত ঘটনা। নিজেদের জাতিগত আভিজাত্য তুলে ধরতে শক্তিশালী ও সক্ষম দেশগুলো পরমাণু বোমার অধিকারী হওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে। আবার, দেশে দেশে শুরু হয় 'শান্তিপূর্ণ কাজে' পরমাণু গবেষণাও। গত ৮ এপ্রিল ইরানি সংবাদমাধ্যম তেহরান টাইমস জানায়—ইরানের জাতীয় পরমাণু প্রযুক্তি দিবস উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ এসলামি বলেন, 'বাহ্যিক চাপে আমরা গর্তে ঢুকে যাব না।' পরমাণু গবেষণায় দেশটির অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি জানান, ২০২৩ সালে ইরান মেডিক্যাল ও রেডিওফার্মাসিউটিক্যাল খাতে ১৫টি নতুন সাফল্য পেয়েছে। তার দাবি, দেশটি রেডিওফার্মাসিউটিক্যাল খাতে আলফা রশ্মি ব্যবহার নিয়ে আলোচনাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। সারাবিশ্বে ইরান এই প্রথম এমন মাইলফলক সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, 'ক্যানসার রোগীদের সফল চিকিৎসায় আমাদের অর্জিত জ্ঞান ও উদ্ভাবন নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে আছে। আমরা সেই ধারা বজায় রেখে চলছি।' ক্যানসারাস টিউমার ও নিউরোলগিক্যাল টিউমার দূর করতে ইরানের রেডিওফার্মাসিউটিক্যালের কার্যকারিতাও তুলে ধরেন তিনি। অপর এক অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ এসলামি ইরানের পরমাণু প্ল্যান্টের সম্প্রসারণের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে বলেন, 'বুশেহর, খুজেস্তান ও মাকরানে নতুন প্ল্যান্ট তৈরি করা হবে।' ইরানের জাতীয় পরমাণু শক্তি দিবসে তেহরানে সেন্ট্রিফিউজ দেখানো হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো গত ২১ ফেব্রুয়ারি ইসলামি বিপ্লবের ৪৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান দাবি করেন, পরমাণু গবেষণায় কয়েকটি বিভাগে ইরানের অবস্থান বিশ্বে শীর্ষ পাঁচের মধ্যে আছে। এত সাফল্যের পরও পরমাণু গবেষণার জন্য বেশ মূল্য দিতে হচ্ছে ইরানকে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৭ সালের পর থেকে ইরানের অন্তত ছয় শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করা হয়েছে। এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য তেহরান বরাবর তেল আবিব ও ওয়াশিংটনকে দায়ী করে আসলেও তারা তা স্বীকার বা অস্বীকার করেনি। সর্বশেষ, ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর ইরানের প্রধান পরমাণুবিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহকে রাজধানী তেহরানে দূর নিয়ন্ত্রিত অস্ত্র ব্যবহার করে হত্যা করা হয়। এ সংক্রান্ত বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিমের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মনে করে যে ফাখরিজাদেহ ইরানের গোপন পরমাণু বোমা তৈরির কাজে নিয়োজিত ছিলেন। শুধু পরমাণু বিজ্ঞানীই নয়, দেশটির পরমাণু কেন্দ্রগুলোতেও নানান সময় 'নাশকতামূলক' হামলা হয়েছে। ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট অব পিস সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের পর থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ইরানের পরমাণুকেন্দ্রগুলোকে লক্ষ্য করে অন্তত দুই ডজন হামলা হয়েছে। আছে সাইবার অ্যাটাকও। গত বছরের ২৮ জানুয়ারিও মধ্যরাতে মধ্য ইস্পাহানে আত্মঘাতী ড্রোন হামলার শব্দ শোনা যায়। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রশ্ন জাগে—খনিজ জ্বালানি সমৃদ্ধ ইরানের সাফল্যের 'মেরুদণ্ড' হিসেবে পরিচিত যে পরমাণু গবেষণার জন্য দেশটিকে প্রায় অর্ধ শতক ধরে চরম মূল্য দিতে হচ্ছে তা দেশটির জন্য আশীর্বাদ না অভিশাপ? বিজ্ঞান 'আশীর্বাদ না অভিশাপ' তা নিয়ে বিতর্ক বিশ্বব্যাপী। এ কথা অস্বীকার করা উপায় নেই—পরমাণু শক্তির সুফল মানবজাতিকে একদিকে যেমন সভ্যতার শিখরে তুলে আনতে পারে অন্যদিকে এর অপব্যবহার মুহূর্তেই পৃথিবীকে বানিয়ে দিতে পারে মৃত গ্রহে। তাই হয়ত ড. ওপেনহেইমার আক্ষেপ করে বলেছিলেন, বিশ্ববাসী একদিন তাকে 'দ্য ডেস্ট্রয়ার অব ওয়ার্ল্ডস' বলে ঘৃণা করবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ১৯৪২ সালে যখন 'ম্যানহাটন প্রজেক্ট'র মাধ্যমে লস আলামোস ল্যাবরেটরিতে পরমাণু বোমা বানানোর প্রক্রিয়া চলছে তখন পরমাণু বোমার ধ্বংসের ব্যাপ্তি বোঝাতে গিয়ে ওই প্রকল্প থেকে বেরিয়ে আসা এক সহকর্মী ড. ওপেনহেইমারকে বলেছিলেন, 'দিস ইজ নট অ্যা নিউ ওয়েপন। ইট ইস অ্যা নিউ ওয়ার্ল্ড'। পরমাণু বোমার ধ্বংসলীলা দেখে মানুষ এক নতুন পৃথিবী গড়ার দিকে মনোযোগ দেবে এমনটি আশা করা হলেও ঘটেছে বিপরীত ঘটনা। নিজেদের জাতিগত আভিজাত্য তুলে ধরতে শক্তিশালী ও সক্ষম দেশগুলো পরমাণু বোমার অধিকারী হওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে। আবার, দেশে দেশে শুরু হয় 'শান্তিপূর্ণ কাজে' পরমাণু গবেষণাও। গত ৮ এপ্রিল ইরানি সংবাদমাধ্যম তেহরান টাইমস জানায়—ইরানের জাতীয় পরমাণু প্রযুক্তি দিবস উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ এসলামি বলেন, 'বাহ্যিক চাপে আমরা গর্তে ঢুকে যাব না।' পরমাণু গবেষণায় দেশটির অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি জানান, ২০২৩ সালে ইরান মেডিক্যাল ও রেডিওফার্মাসিউটিক্যাল খাতে ১৫টি নতুন সাফল্য পেয়েছে। তার দাবি, দেশটি রেডিওফার্মাসিউটিক্যাল খাতে আলফা রশ্মি ব্যবহার নিয়ে আলোচনাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। সারাবিশ্বে ইরান এই প্রথম এমন মাইলফলক সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, 'ক্যানসার রোগীদের সফল চিকিৎসায় আমাদের অর্জিত জ্ঞান ও উদ্ভাবন নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে আছে। আমরা সেই ধারা বজায় রেখে চলছি।' ক্যানসারাস টিউমার ও নিউরোলগিক্যাল টিউমার দূর করতে ইরানের রেডিওফার্মাসিউটিক্যালের কার্যকারিতাও তুলে ধরেন তিনি। অপর এক অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ এসলামি ইরানের পরমাণু প্ল্যান্টের সম্প্রসারণের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে বলেন, 'বুশেহর, খুজেস্তান ও মাকরানে নতুন প্ল্যান্ট তৈরি করা হবে।' গত ২১ ফেব্রুয়ারি ইসলামি বিপ্লবের ৪৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান দাবি করেন, পরমাণু গবেষণায় কয়েকটি বিভাগে ইরানের অবস্থান বিশ্বে শীর্ষ পাঁচের মধ্যে আছে। এত সাফল্যের পরও পরমাণু গবেষণার জন্য বেশ মূল্য দিতে হচ্ছে ইরানকে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৭ সালের পর থেকে ইরানের অন্তত ছয় শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করা হয়েছে। এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য তেহরান বরাবর তেল আবিব ও ওয়াশিংটনকে দায়ী করে আসলেও তারা তা স্বীকার বা অস্বীকার করেনি। সর্বশেষ, ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর ইরানের প্রধান পরমাণুবিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহকে রাজধানী তেহরানে দূর নিয়ন্ত্রিত অস্ত্র ব্যবহার করে হত্যা করা হয়। এ সংক্রান্ত বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিমের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মনে করে যে ফাখরিজাদেহ ইরানের গোপন পরমাণু বোমা তৈরির কাজে নিয়োজিত ছিলেন। শুধু পরমাণু বিজ্ঞানীই নয়, দেশটির পরমাণু কেন্দ্রগুলোতেও নানান সময় 'নাশকতামূলক' হামলা হয়েছে। ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট অব পিস সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের পর থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ইরানের পরমাণুকেন্দ্রগুলোকে লক্ষ্য করে অন্তত দুই ডজন হামলা হয়েছে। আছে সাইবার অ্যাটাকও। গত বছরের ২৮ জানুয়ারিও মধ্যরাতে মধ্য ইস্পাহানে আত্মঘাতী ড্রোন হামলার শব্দ শোনা যায়। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রশ্ন জাগে—খনিজ জ্বালানি সমৃদ্ধ ইরানের সাফল্যের 'মেরুদণ্ড' হিসেবে পরিচিত যে পরমাণু গবেষণার জন্য দেশটিকে প্রায় অর্ধ শতক ধরে চরম মূল্য দিতে হচ্ছে তা দেশটির জন্য আশীর্বাদ না অভিশাপ?
'দ্য ওয়ার্ল্ড উইল রিমেম্বার দিস ডে'— পরমাণু বোমার জনক হিসেবে পরিচিত ড. জে রবার্ট ওপেনহেইমারের এমন সগোক্তি বিশ্ববাসী স্মরণ করছে ভিন্নভাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ: কতটা ছড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজার প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভের সময় শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। গাজার প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলো থেকে নিজেদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বিচ্ছিন্ন করার দাবি জানিয়ে নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল সেটি ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাসসহ অন্যান্য রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়েও ছড়িয়ে পড়েছে। গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। আহত অসংখ্য। সেইসঙ্গে অনাহারে দিন পার করছেন গাজার মানুষ। এসব ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যের অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা গাজায় ইসরায়েলের হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন। আল জাজিরা গতকাল তাদের এক্সপ্লেইনারে জানায়, এই বিক্ষোভ শুধু যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। গত বছর ৭ অক্টোবর গাজায় হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থীরা গাজার সমর্থনে মিছিল করছে। কলাম্বিয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নেওয়ার পর এই বিক্ষোভ ফ্রান্স থেকে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। কোথায় কোথায় হচ্ছে বিক্ষোভ ফিলিস্তিনের সমর্থনে ফ্রান্সের প্যারিসে সরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে এসেছেন। সেইসঙ্গে সায়েন্সেস পো থেকে প্যালেস্টাইন কমিটি একটি বিক্ষোভের আয়োজন করে যেখানে শিক্ষার্থীরা বুধবার প্রায় ১০টি তাঁবু স্থাপন করে। পুলিশি ধরপাকড় সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার ফের জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা। অস্ট্রেলিয়ায়, সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গত মঙ্গলবার ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নেয় এবং শুক্রবারেও তাদের সেই বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। এছাড়া মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার তাদের মূল ক্যাম্পাসের দক্ষিণ লনে তাঁবু খাটায়। ইতালির রোমে সাপিয়েনজা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গত ১৭ এবং ১৮ এপ্রিল বিক্ষোভ, অবস্থান ধর্মঘট এবং অনশন করে। ১৯ এপ্রিল রাত থেকে যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ডে অবস্থিত ক্যাম্পাস পিয়াজা দখল করে রেখেছে 'ওয়ারউইক স্ট্যান্ডস উইথ প্যালেস্টাইন' নামে  ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুপ। সোমবার ইংল্যান্ডের লেস্টারে একটি বিক্ষোভ হয় যাতে লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন প্যালেস্টাইন সোসাইটি অংশ নেয়। গত মাসে লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইসরায়েলের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টতার প্রতিবাদে একটি ক্যাম্পাস ভবন দখল করে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি কী? প্যারিস ইনস্টিটিউট অফ পলিটিক্যাল স্টাডিজ নামে পরিচিত, সায়েন্সেস পো-এর শিক্ষার্থী হিচাম আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, 'আমাদের কয়েকটি দাবির একটি হলো ইসরায়েল রাষ্ট্রের সাথে এ প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক এবং আর্থিক সমস্ত সম্পর্কের তদন্ত শুরু করতে হবে'। তিনি আরও বলছিলেন, পুলিশের মারমুখি আচরণের কারণে ফ্রান্সে ফিলিস্তিন নিয়ে কথা বলা 'অত্যন্ত কঠিন' হয়ে পড়েছে। আয়োজকরা আরও চান সায়েন্সেস পো ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাক। সরবোনের শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনিদের সাহায্য করার জন্য ফরাসি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের খবরে বলা হয়েছে, সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইসরায়েলি বিশ্ববিদ্যালয় ও অস্ত্র প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে তাদের ইনস্টিটিউটের সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি জানিয়েছেন। ওয়ারউইকের শিক্ষার্থী পরিচালিত সংবাদপত্র দ্য বোয়ার জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের দাবি, ইসরায়েলের 'গণহত্যায়' অর্থায়ন করছে এমন চিহ্নিত সব প্রতিষ্ঠানের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়টি যেন সম্পর্ক ছিন্ন করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিক্ষোভকারী এক শিক্ষার্থী দ্য বোয়ারকে জানিয়েছেন, মার্কিন বিক্ষোভ তাদের উজ্জীবিত করেছে। সোমবার লেস্টারে এলবিট সিস্টেমস ইউকের ড্রোন কারখানার বাইরে কারখানাটি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ হয়। গত মাসে লিডসের ছাত্র বিক্ষোভকারীরা গাজা যুদ্ধের সময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীতে কাজ করা জাকারিয়া ডয়েচ নামে এক ইহুদি ধর্মগুরুকে বরখাস্ত করার দাবি জানায়। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশি অভিযান হচ্ছে কি? বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, বুধবার সায়েন্সেস পো কর্তৃপক্ষ শান্তিপূর্ণভাবে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নিতে 'অসংখ্যবার চেষ্টা' চালানোর পর পুলিশ বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ইনস্টিটিউটের ফিলিস্তিন কমিটি বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছে যে 'নিরাপত্তা বাহিনীর ৫০ জনেরও বেশি সদস্য বিক্ষোভকারীদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিয়েছে এবং প্রায় ১০০ পুলিশ কর্মকর্তা বাইরে তাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন'। হিচাম জানান, তিনি ও তার সহপাঠীরা তিন দিন ধরে তাদের শিক্ষপ্রতিষ্ঠানটিতে অবস্থান করছেন। তিনি বলছিলেন, 'আমরা একটি ভবনে গিয়েছিলাম, সেখানে তারা (বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ) পুলিশ ডেকেছিল, তাই আমরা মূল ভবনে চলে যাই। তবে আমি মনে করি, যত বেশি দমন-পীড়ন ঘটছে, তত বেশি মানুষ সংগঠিত হচ্ছে। আগে হয়তো ৩০০ জন ছিলাম, এখন ৬০০ জন'। বৃহস্পতিবার আল জাজিরার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সরবোনের শিক্ষার্থীদের দাঙ্গা পুলিশ ঘিরে রেখেছে। সরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলছিলেন, 'যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব সহকারে খোলামেলা আলোচনা না করব ততক্ষণ এটি চলতে থাকবে। প্যারিসের প্যান্থিয়ন-সরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক আন্দোলনের বৈশ্বিক ইতিহাস বিষয়ে বিশেষজ্ঞ এরাল্ডো সুজা ডস সান্তোস, বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফ্রান্সে বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় পুলিশি দমনপীড়ন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফিলিস্তিনের সমর্থনে ফ্রান্সের প্যারিসে সরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে এসেছেন। সেইসঙ্গে সায়েন্সেস পো থেকে প্যালেস্টাইন কমিটি একটি বিক্ষোভের আয়োজন করে যেখানে শিক্ষার্থীরা বুধবার প্রায় ১০টি তাঁবু স্থাপন করে। পুলিশি ধরপাকড় সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার ফের জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা। অস্ট্রেলিয়ায়, সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গত মঙ্গলবার ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নেয় এবং শুক্রবারেও তাদের সেই বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। এছাড়া মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার তাদের মূল ক্যাম্পাসের দক্ষিণ লনে তাঁবু খাটায়। ইতালির রোমে সাপিয়েনজা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গত ১৭ এবং ১৮ এপ্রিল বিক্ষোভ, অবস্থান ধর্মঘট এবং অনশন করে। ১৯ এপ্রিল রাত থেকে যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ডে অবস্থিত ক্যাম্পাস পিয়াজা দখল করে রেখেছে 'ওয়ারউইক স্ট্যান্ডস উইথ প্যালেস্টাইন' নামে  ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুপ। সোমবার ইংল্যান্ডের লেস্টারে একটি বিক্ষোভ হয় যাতে লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন প্যালেস্টাইন সোসাইটি অংশ নেয়। গত মাসে লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইসরায়েলের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টতার প্রতিবাদে একটি ক্যাম্পাস ভবন দখল করে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি কী? প্যারিস ইনস্টিটিউট অফ পলিটিক্যাল স্টাডিজ নামে পরিচিত, সায়েন্সেস পো-এর শিক্ষার্থী হিচাম আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, 'আমাদের কয়েকটি দাবির একটি হলো ইসরায়েল রাষ্ট্রের সাথে এ প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক এবং আর্থিক সমস্ত সম্পর্কের তদন্ত শুরু করতে হবে'। তিনি আরও বলছিলেন, পুলিশের মারমুখি আচরণের কারণে ফ্রান্সে ফিলিস্তিন নিয়ে কথা বলা 'অত্যন্ত কঠিন' হয়ে পড়েছে। আয়োজকরা আরও চান সায়েন্সেস পো ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাক। সরবোনের শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনিদের সাহায্য করার জন্য ফরাসি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের খবরে বলা হয়েছে, সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইসরায়েলি বিশ্ববিদ্যালয় ও অস্ত্র প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে তাদের ইনস্টিটিউটের সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি জানিয়েছেন। ওয়ারউইকের শিক্ষার্থী পরিচালিত সংবাদপত্র দ্য বোয়ার জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের দাবি, ইসরায়েলের 'গণহত্যায়' অর্থায়ন করছে এমন চিহ্নিত সব প্রতিষ্ঠানের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়টি যেন সম্পর্ক ছিন্ন করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিক্ষোভকারী এক শিক্ষার্থী দ্য বোয়ারকে জানিয়েছেন, মার্কিন বিক্ষোভ তাদের উজ্জীবিত করেছে। সোমবার লেস্টারে এলবিট সিস্টেমস ইউকের ড্রোন কারখানার বাইরে কারখানাটি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ হয়। গত মাসে লিডসের ছাত্র বিক্ষোভকারীরা গাজা যুদ্ধের সময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীতে কাজ করা জাকারিয়া ডয়েচ নামে এক ইহুদি ধর্মগুরুকে বরখাস্ত করার দাবি জানায়। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশি অভিযান হচ্ছে কি? বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, বুধবার সায়েন্সেস পো কর্তৃপক্ষ শান্তিপূর্ণভাবে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নিতে 'অসংখ্যবার চেষ্টা' চালানোর পর পুলিশ বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ইনস্টিটিউটের ফিলিস্তিন কমিটি বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছে যে 'নিরাপত্তা বাহিনীর ৫০ জনেরও বেশি সদস্য বিক্ষোভকারীদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিয়েছে এবং প্রায় ১০০ পুলিশ কর্মকর্তা বাইরে তাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন'। হিচাম জানান, তিনি ও তার সহপাঠীরা তিন দিন ধরে তাদের শিক্ষপ্রতিষ্ঠানটিতে অবস্থান করছেন। তিনি বলছিলেন, 'আমরা একটি ভবনে গিয়েছিলাম, সেখানে তারা (বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ) পুলিশ ডেকেছিল, তাই আমরা মূল ভবনে চলে যাই। তবে আমি মনে করি, যত বেশি দমন-পীড়ন ঘটছে, তত বেশি মানুষ সংগঠিত হচ্ছে। আগে হয়তো ৩০০ জন ছিলাম, এখন ৬০০ জন'। বৃহস্পতিবার আল জাজিরার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সরবোনের শিক্ষার্থীদের দাঙ্গা পুলিশ ঘিরে রেখেছে। সরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলছিলেন, 'যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব সহকারে খোলামেলা আলোচনা না করব ততক্ষণ এটি চলতে থাকবে। প্যারিসের প্যান্থিয়ন-সরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক আন্দোলনের বৈশ্বিক ইতিহাস বিষয়ে বিশেষজ্ঞ এরাল্ডো সুজা ডস সান্তোস, বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফ্রান্সে বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় পুলিশি দমনপীড়ন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজার প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভের সময় শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।
টিকটক নিষিদ্ধের বিলে মার্কিন সিনেটের অনুমোদন, বাইডেনের সইয়ের অপেক্ষা
তরুণদের কাছে জনপ্রিয় চীনের মালিকানাধীন অ্যাপ টিকটক নিষিদ্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে পাস হওয়া বিতর্কিত একটি বিল অনুমোদন করেছে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেট। বিবিসি জানায়, বিলে অ্যাপটির মালিক চীনের কোম্পানি বাইটড্যান্সকে তার অংশীদারিত্ব বিক্রির জন্য নয় মাস সময় দেওয়া হয়েছে, অন্যথায় অ্যাপটিকে যুক্তরাষ্ট্রে ব্লক করে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। সিনেট অনুমোদন করায় বিলটি এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে হস্তান্তরের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে এর আগেই বাইডেন বলেছেন যে, বিলটি ডেস্কে আসার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি তাতে সই করবেন। এর ফলে বাইটড্যান্সকে তার অংশীদারিত্ব 'জোরপূর্বক' বিক্রির জন্য চীনা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। তবে ইতোমধ্যে বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপের প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে কয়েক বছর সময় লেগে যেতে পারে। গত শনিবার দ্বিদলীয় সমর্থন পাওয়া বিলটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে ৩৬০-৫৮ ভোটের বড় ব্যবধানে পাস হয়।
তরুণদের কাছে জনপ্রিয় চীনের মালিকানাধীন অ্যাপ টিকটক নিষিদ্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে পাস হওয়া বিতর্কিত একটি বিল অনুমোদন করেছে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেট।
আজ বিশ্ব বই দিবস
আজ বিশ্ব বই দিবস। দিনটি 'বিশ্ব গ্রন্থ ও গ্রন্থস্বত্ব দিবস' নামেও পরিচিত। প্রতি বছর এই দিবসটি সারা বিশ্বের বইপ্রেমীরা বিশেষ গুরুত্ব নিয়ে উদযাপন করেন। আজ মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে। বই পড়া, বই ছাপানো, বইয়ের কপিরাইট সংরক্ষণ করা ইত্যাদি বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে প্রতি বছর ২৩ এপ্রিল ইউনেস্কোর উদ্যোগে এই দিবস পালন করা হয়। এই দিনটিতে বই পড়ার আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতার উদযাপন ও প্রচারণা চালানো হয়। দিনটিতে বই পড়ে অতীত ও ভবিষ্যতের কথা ভাবেন অনেক পাঠক। বই দিবস হিসেবে ২৩ এপ্রিলকে বেছে নেওয়ার কয়েকটি কারণ রয়েছে। সাহিত্য জগতের তিন কিংবদন্তী উইলিয়াম শেকসপিয়ার, মিগেল দে থের্ভান্তেস ও ইনকা গার্সিলাসো দে ভেগার প্রয়াণ দিবস এই ২৩ এপ্রিল। ১৯৯৫ সালে প্যারিসে ইউনেসকোর সাধারণ অধিবেশনে এই দিনটিকে বই দিবস হিসেবে উদযাপনের জন্য বেছে নেওয়া হয়। এই তিন প্রয়াত সাহিত্যিকের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এই দিন বেছে নেওয়ার মূল কারণ। সারা বিশ্বের পাঠকরা প্রতি বছর এই দিন উদযাপনের জন্য নানা উদ্যোগ হাতে নেন। এসব উদ্যোগের মধ্যে আছে: এ বছর বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এই দিবসটি পালন করছেন লেখক, পাঠক ও প্রকাশকরা।
আজ বিশ্ব বই দিবস। দিনটি 'বিশ্ব গ্রন্থ ও গ্রন্থস্বত্ব দিবস' নামেও পরিচিত। প্রতি বছর এই দিবসটি সারা বিশ্বের বইপ্রেমীরা বিশেষ গুরুত্ব নিয়ে উদযাপন করেন।
৭৮৭ ড্রিমলাইনার সিরিজে গুরুতর ত্রুটি রয়েছে: বোয়িংয়ের সাবেক কোয়ালিটি ইঞ্জিনিয়ার
মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের ৭৮৭ ড্রিমলাইনার সিরিজের সব বিমানে গুরুতর ত্রুটি রয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কোয়ালিটি ইঞ্জিনিয়ার স্যাম সালেহপৌর। মার্কিন গণমাধ্যম এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্যাম বলেন, এই ত্রুটি ঠিক করা না হলে ৭৮৭ ড্রিমলাইনার সিরিজের উড়োজাহাজ হঠাৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে মাঝপথেই 'ভূপাতিত' হয়ে যেতে পারে। বুধবার প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে স্যাম বলেন, উড়োজাহাজের ফিউসেলেজের জয়েন্টগুলোর ফাঁক পূরণের জন্য ছোটো ধাতব টুকরো ব্যবহার করা হয়। প্রস্তুতের পর ড্রিমলাইনার সিরিজের বেশকিছু উড়োজাহাজে এই ফাঁক রয়ে গেছে। নিজের পরিবারকে এই সিরিজের কোনো উড়োজাহাজে দেখতে চান কি না? এমন প্রশ্নে জবাবে কোনো দ্বিধা না করে তিনি বলেন, 'এই মুহূর্তে অবশ্যই না।' তিনি বলেন, দ্রুত ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের সব উড়োজাহাজ গ্রাউন্ডেড করে এই ত্রুটি সারানো জরুরি। যদিও স্যামের এই দাবি অস্বীকার করে বোয়িংয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই সিরিজের সব উড়োজাহাজ পুরোপুরি নিরাপদ এবং প্রতিষ্ঠানটি '৭৮৭ ড্রিমলাইনারে ওপর সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাসী'। বোয়িংয়ে ১৫ বছর চাকরি করেছেন স্যাম। তিনি বলেছেন, চাকরিরত অবস্থায় এই সমস্যার কথা বোয়িংকে বলার পর ২০২২ সালে তাকে বদলি করে ৭৭৭ উৎপাদনের লাইনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এনবিসি নিউজকে তিনি বলেন, বোয়িং ৭৮৭-এর উত্পাদন বন্ধ রাখা উচিত। কারণ, এই ফাঁকগুলোর কারণে ৭৮৭-এর দুর্ঘটনার আশঙ্কার পাশাপাশি এর জীবনকালও কমে যাচ্ছে। স্যামের এই দাবির বিষয়ে ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সাবেক সেফটি ইনভেস্টিগেটর জেফ গুজেটি বলেছেন, 'এর কোনো প্রমাণ নেই। তারপরও এই ফাঁকগুলো যদি থেকে থাকে, তাহলে বোয়িংয়ের ভাষ্য মতে, উড়োজাহাজটি এতোটাই প্রতিরোধী ও কাঠামোগতভাবে শক্তিশালী যে সেগুলো ভেঙে পড়বে না।'
মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের ৭৮৭ ড্রিমলাইনার সিরিজের সব বিমানে গুরুতর ত্রুটি রয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কোয়ালিটি ইঞ্জিনিয়ার স্যাম সালেহপৌর।
গাজায় নিহত ৩৪ হাজার ছাড়াল
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৪ হাজার ১২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া, আহত হয়েছেন প্রায় ৭৬ হাজার ৮৩৩ জন। আজ শুক্রবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৪২ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ৬৩ জন আহত হয়েছেন। গত ছয় মাস ধরে চলা ইসরায়েল-হামাসের এই যুদ্ধে নিহত ফিলিস্তিনিদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৪ হাজার ১২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া, আহত হয়েছেন প্রায় ৭৬ হাজার ৮৩৩ জন।
যেমন গেল ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দিনের ভোট
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম পর্বে ২১ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ১০২ আসনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। আজ শুক্রবার ভোটের প্রথম দিন সকাল ৭টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়, শেষ হয় সন্ধ্যা ৬টায়। এ সময়ে প্রায় ৬০ শতাংশ ভোট পড়েছে। নয়াদিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের এক মুখপাত্র বলেন, 'প্রথম দিন আট ঘণ্টায় ৫৯ দশমিক ৭০ শতাংশ ভোট পড়েছে। ভোটগ্রহণ "সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ" হয়েছে।' পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারে তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ছাড়া, অন্য কোথাও তেমন সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি। ইসি কর্মকর্তারা জানান, বিকেল ৫টা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ভোট পড়েছে ৬৬ দশমিক ৭ শতাংশ এবং মেঘালয়ে পড়েছে ৬২ শতাংশ। তবে, পূর্ব নাগাল্যান্ডের ছয় জেলায় তেমন ভোটার উপস্থিতি দেখা যায়নি। আলাদা রাজ্যের দাবিতে ওইসব এলাকার উপজাতিদের সংগঠনগুলোর ডাকে সেখানকার ভোটাররা বাড়ি থেকে বের হননি। এছাড়া, ইভিএম ব্যাবহারের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যার খবর পাওয়া গেছে। তবে, তা দ্রুত সমাধান করা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান। জাতিগত দ্বন্দ্ব থাকা স্বত্বেও মণিপুরে বিকেল ৩টা পর্যন্ত প্রায় ৪৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। ছত্তিশগড়ে মাওবাদীদের প্রভাব থাকলেও ভোটগ্রহণ হয়েছে ৪২ শতাংশের বেশি। রাজ্যের বিজাপুর জেলায় আইইডি বিস্ফোরণে সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের এক সহকারী কমান্ড্যান্ট আহত হন। তামিলনাড়ুতে জয়ের জন্য বিজেপি মরিয়া। এ রাজ্যে ৩৯ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। অরুণাচলে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে সকালে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও, শেষ পর্যন্ত ৩৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ ভোট পড়েছে। বিহারের চারটি আসনে ৭৫ লাখ ভোটারের মধ্যে দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রায় ৩২ শতাংশ ভোট পড়েছে। জম্মু-কাশ্মীরে অবিরাম বৃষ্টির মধ্যেও ৪৩ দশমিক ১১ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে নির্বাচন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম পর্বে ২১ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ১০২ আসনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে।
ভোটারদের ‘স্বতঃস্ফূর্ত’ অংশগ্রহণ, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-তৃণমূল সমর্থকদের সংঘর্ষ
ভারতে আজ থেকে শুরু হয়েছে লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পর্ব। আজ শুক্রবার প্রথম দফায়, দেশটির ২১টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে মোট ১০২টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। এর মধ্যে অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, বিহার, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, রাজস্থান, সিকিম, তামিলনাড়ু, ত্রিপুরা, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি আসনে ভোট চলছে। এছাড়া কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আন্দামান ও নিকোবর, লাক্ষাদ্বীপ, জম্মু ও কাশ্মীর এবং পুদুচেরিতেও ভোট চলছে। মোট সাত দফায় আগামী ১ জুন পর্যন্ত এই ভোট গ্রহণ চলবে। ৪ জুন ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হবে। আজ শুক্রবার মোট ১৬ কোটি ৬০ লাখ ভোটার ভোট দেবেন। স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় ভোটকেন্দ্র খোলা হয়। যদিও ভোটাররা তার আগে থেকেই ভোটকেন্দ্রগুলোর সামনে লাইন করে দাঁড়িয়ে যান। ভোটকেন্দ্রগুলো ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের পাশপাশি বয়স্ক ভোটারদের বাড়ি বাড়ি থেকে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, পশ্চিমবঙ্গের তিনটি লোকসভা কেন্দ্র - আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়িতে আজ ভোটগ্রহণ চলছে। এর মধ্যে সকাল থেকে কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ির বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কোচবিহারের দিনহাটা, চান্দামারি, আলিপুরদুয়ারের তুফানগঞ্জের হরিহরহাট ও শীতলখুচির শালবাড়ি এলাকায় তৃণমূল ও বিজেপির সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এছাড়া জলপাইগুড়ির ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি এলাকায় বিজেপির একটি বুথ অফিস পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আবার তুফানগঞ্জের তৃণমূলের নির্বাচন অফিসও পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। এদিকে, ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশের আটটি আসনে ভোট চলছে। ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় উত্তর প্রদেশের ৮০টি আসন আছে, যা যেকোনো রাজ্যের আসনসংখ্যার চেয়ে বেশি। সাত দফায় অনুষ্ঠেয় লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপে আজ শুক্রবার উত্তর প্রদেশের আটটি আসনে ভোটের পর আরও ছয় ধাপে অপর ৭২টি আসনে ভোট হবে। ধারণা করা হচ্ছে, ক্ষমতাসীন বিজেপি এই রাজ্যে বেশ ভালো ফল করবে। ৮০টি আসনের মধ্যে তারা ৭৩ আসনে জয়ী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে উত্তর প্রদেশের একাধিক আসনেও বিজেপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনেছে বিরোধীপক্ষ। দেশটির নির্বাচন কমিশন জানায়, দুপুর ১২টা পর্যন্ত সবকটি আসনে স্বতস্ফুর্তভাবেই ভোটাররা আসছেন, ভোট দিচ্ছেন। ভোটের আগের জনমত জরিপ অনুযায়ী, সহজ জয় পেয়ে তৃতীয় মেয়াদের জন্য ক্ষমতায় আসতে চলেছে নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টি-বিজেপি। লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে বিজেপি এবার এককভাবে ৩৭০টি আসনে জয়লাভের প্রত্যাশা করছে। আর বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের লক্ষ্য মোট ৪০০টি আসনে জয়লাভ করা। গতবারের নির্বাচনে এনডিএ জোট ৩৫৩টি আসন পায়। তার আগের নির্বাচনে (২০১৪ সাল) বিজেপি ৩০৩ আসন পেয়েছিল। মোদিকে টেক্কা দিতে এবার কংগ্রেসের নেতৃত্বে ভারতের বিরোধীদলগুলো 'ইন্ডিয়া' জোট গঠন করেছে। তবে জোট গঠনের পর থেকে আন্তঃকলহের করেণেই তারা খবরের শিরোনাম বেশি হয়েছে।
ভারতে আজ থেকে শুরু হয়েছে লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পর্ব।
ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল
ইরানের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। পশ্চিম এশিয়ার এই দেশটির ইসফাহান শহরে বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গেছে। দুই মার্কিন কর্মকর্তা বিষয়টি বিবিসিকে নিশ্চিত করেছেন। এপির খবরে বলা হয়েছে, ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, বেশ কয়েকটি শহরে ফ্লাইট চলাচল স্থগিত করা হয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন দেশটির ইসফাহান শহরে বিস্ফোরণের খবর জানিয়েছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসফাহানের ওপর তিনটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। ইসফাহানের আকাশে তিনটি ড্রোন দেখা যাওয়ার পর বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা "আকাশেই ড্রোনগুলোকে ধ্বংস করেছে"। এর আগে, গত শনিবার ইসরাইলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। পরে এর কড়া জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ার দিয়েছিল ইসরায়েল প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্র ও বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ ইসরায়েলকে পাল্টা হামলা না চালানোর জন্য আহ্বান জানালেও ইসরায়েল এই আহ্বান উপেক্ষা করে স্থানীয় সময় আজ শুক্রবার ভোরে ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল।
ইরানের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। পশ্চিম এশিয়ার এই দেশটির ইসফাহান শহরে বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গেছে।
ইরানের হামলা আন্তর্জাতিক শান্তির জন্য মারাত্মক হুমকি: ইসরায়েল
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতিকে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে লেখা একটি চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর শাখা ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসকে (আইআরজিসি) যেন সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। শনিবার ইসরায়েলে ইরানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক আহ্বানের অনুরোধ জানিয়ে পরিষদের প্রেসিডেন্ট ভ্যানেসা ফ্রেজিয়ারকে চিঠি দেয় ইসরায়েল। আজ রোববার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল তাদের চিঠিতে লিখেছে যে ইরানের এই হামলা 'আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি'। গাজায় হামাস, লেবাননে হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনে হুতিদের সমর্থনের মাধ্যমে ইরান আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি লঙ্ঘন করেছে এবং দেশটি 'বছর ধরে অস্থিতিশীলতার স্থপতি' বলে অভিযোগ করা হয়েছে ইসরায়েলের চিঠিতে। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এই হামলা 'ইসরায়েলের সার্বভৌমত্ব, আন্তর্জাতিক আইন ও নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।' নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট ভ্যানেসা ফ্রেজিয়ারকে লেখা এক চিঠিতে ইরান বলেছে, তারা কেবল নিজেদের রক্ষা করেছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, 'জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদে বর্ণিত আত্মরক্ষার অধিকার এবং ইসরায়েলের পুনরাবৃত্তিমূলক সামরিক আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়া হিসেবে' ইরান এ কাজ করেছে। ইসরায়েলের আহ্বানে সাড়া দিয়ে জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছেন নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতিকে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে লেখা একটি চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর শাখা ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসকে (আইআরজিসি) যেন সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
ইসরায়েলের প্রতি লৌহদৃঢ় সমর্থন রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের: বাইডেন
ইসরায়েলে ইরানের শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিন্দা জানিয়ে সমন্বিত জি-৭ কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আজ রোববার রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে ইরানের নিক্ষেপ করা 'প্রায় সব' ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি ভূখণ্ডের বাইরেই গুলি করে নামাতে সহায়তা করেছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন জানিয়েছেন, ইসরায়েলে মার্কিন বাহিনী ও স্থাপনার ওপর হামলা হয়নি। গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিষয় নিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বাইডেনের কিছুটা মতানৈক্য তৈরি হলেও ইরানের হামলার পর তারা টেলিফোনে কথা বলেছেন এবং ইসরায়েলের প্রতি 'লৌহদৃঢ়' মার্কিন সমর্থন রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাইডেন। হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেন, 'ইরানের এই নির্লজ্জ আক্রমণের জন্য আগামীকাল আমি সমন্বিত কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়ার জন্য জি-৭ নেতাদের আহ্বান জানাবো।' শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে ইরান। শনিবার রাতে এই হামলা চালানো হয়। এই প্রথম তেহরান সরাসরি ইরায়েলের ভূখণ্ডে হামলা চালালো। বিবিসি জানায়, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ইরান ২০০টিরও বেশি ড্রোন, ক্রুজ মিসাইল এবং ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুড়েছে। গত সপ্তাহে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের দূতাবাস প্রাঙ্গণে হামলা চালায় ইসরায়েল। এই হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড কর্পসের একজন সিনিয়র কমান্ডার এবং ছয় কর্মকর্তা নিহত হন। ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তেহরান। ইরানের এই প্রতিশোধমূলক হামলায় একটি বিস্তৃত আঞ্চলিক সংঘাতের হুমকি তৈরি হলো।
ইসরায়েলে ইরানের শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিন্দা জানিয়ে সমন্বিত জি-৭ কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ইসরায়েলে ২০০টির বেশি ড্রোন-মিসাইল ছুড়েছে ইরান, জরুরি বৈঠকে বাইডেন
শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে ইরান। শনিবার রাতে এই হামলা চালানো হয়। এই প্রথম তেহরান সরাসরি ইরায়েলের ভূখণ্ডে হামলা চালালো। বিবিসি জানায়, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ইরান ২০০টিরও বেশি ড্রোন, ক্রুজ মিসাইল এবং ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুড়েছে। তবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং এই অঞ্চলের মিত্ররা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনগুলোর বড় অংশকে প্রতিরোধ করতে পেরেছে, কয়েক ডজন ড্রোন ও মিসাইল ইসরায়েলি ভূখণ্ডের বাইরেই গুলি করে নামানো হয়েছে বলে জানান তিনি। এদিকে, ইরানের হামলার পর হোয়াইট হাউসে জরুরি বৈঠকে বসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে বাইডেনের বৈঠকের একটি ছবি এক্সে (টুইটার) প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাউস। এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বাইডেন বলেছেন, 'ইরান এবং এর সঙ্গীদের হুমকির বিরুদ্ধে ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রতি আমাদের  দৃঢ় প্রতিশ্রুতি থাকবে।' বাইডেন আরও জানান, ইরান থেকে আসা প্রায় সব ড্রোন ও মিসাইল নামিয়ে ফেলতে ইসরাইলকে সহায়তা করেছে মার্কিন বাহিনী।  'গত সপ্তাহে'ই এই অঞ্চলে মার্কিন সামরিক বিমান এবং ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রতিরক্ষা টিমকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি। 'আমাদের সেনা সদস্যদের অসাধারণ দক্ষতার জন্য আমরা ইসরায়েলকে প্রায় সব ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র নামাতে সাহায্য করতে পেরেছি। আমি কঠোর ভাষায় এই হামলার নিন্দা জানাই,' বাইডেন বলেন। এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাতে বিবিসি জানায়, হোয়াইট হাউসে তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেছেন। বাইডেন আজ সন্ধ্যায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলবেন বলে জানা গেছে। আইডিএফ মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারির জানিয়েছেন, ইসরায়েলে মিসাইল ও ড্রোন হামলায় এখন পর্যন্ত একজন হতাহতের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। তিনি জানান, কয়েকটি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের একটি সামরিক স্থাপনায় কিছু ক্ষতি করেছে। তবে সেটি কোন স্থানে ঘটেছে এ ব্যাপারে বিশদ বিবরণ দেননি তিনি। এর আগে ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা জানিয়েছে, আরাদ অঞ্চলের বেদুইন এলাকায় আহত হওয়া সাত বছর বয়সী একটি শিশুকে চিকিত্সা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে ইরান। শনিবার রাতে এই হামলা চালানো হয়। এই প্রথম তেহরান সরাসরি ইরায়েলের ভূখণ্ডে হামলা চালালো।
সৌদি আরবে ঈদ ১০ এপ্রিল
সৌদি আরবে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। এ অবস্থায় দেশটিতে আগামী বুধবার ১০ এপ্রিল পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। আজ মঙ্গলবার রাতে এক্সে (সাবেক টুইটার) আরব নিউজ এ তথ্য জানিয়েছে। পবিত্র কাবা শরীফের এক্স অ্যাকাউন্টেও একই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, ঈদুল ফিতর আগামী বুধবার উদযাপিত হবে। সৌদি গেজেট এক্সে এক পোস্টে জানায়, শাওয়াল মাসের চাঁদ সোমবার দেখা যায়নি। এর অর্থ হলো এ বছর রমজান মাস ৩০ দিন এবং ঈদ ১০ এপ্রিল বুধবার।
সৌদি আরবে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি।
তাইওয়ানে ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্প, নিহত অন্তত ১
পূর্ব এশিয়ায় স্বঘোষিত দ্বীপরাষ্ট্র তাইওয়ানে ৭ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত একজন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ৫০ জনের বেশি। আজ বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় দ্বীপটি প্রচণ্ড ভূমিকম্পে কেঁপে উঠে। গত ২৫ বছরে তাইওয়ানে এই প্রথম এত শক্তিশালী ভূমিকম্প দেখা গেল। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, তাইওয়ানের ভূমিকম্পের জেরে প্রতিবেশী জাপান ও ফিলিপাইনে সুনামি সতর্কতা দিলেও পরে তা তুলে নেওয়া হয়। তাইওয়ানের দমকল বাহিনীর বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ধারণা করা হচ্ছে দ্বীপটির পূর্বাঞ্চলীয় হুয়ালিয়েন পার্বত্য এলাকায় যিনি মারা গেছেন তিনি ভূমিধসের কারণে পাথর চাপায় প্রাণ হারিয়ে থাকতে পারেন। হুয়ালিয়েন কাউন্টিকে ভূমিকম্পের কেন্দ্র হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তাইওয়ানের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল সাড়ে ১৫ কিলোমিটার। ভূমিকম্পে অন্তত ২৬টি ভবন ভেঙে পড়েছে। এর অর্ধেকের বেশি হুয়ালিয়েনে। সেখানে ধ্বংসস্তূপে ২০ জনের মতো আটকা পড়েছেন। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়ে, তাইওয়ানের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও প্রতিবেশী চীন দ্বীপটিতে সহায়তা পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে। চীনের তাইওয়ানবিষয়ক দপ্তরের মুখপাত্র ঝু ফেংলিয়ান বলেন, 'এ ঘটনায় মূল ভূখণ্ডের সংশ্লিষ্টজনরা বেশ উদ্বিগ্ন। ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করছি।' 'পরিস্থিতির প্রতি নজর রাখা হচ্ছে' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'আমরা সেখানে ত্রাণ সহায়তা পাঠাতে চাই।'
পূর্ব এশিয়ায় স্বঘোষিত দ্বীপরাষ্ট্র তাইওয়ানে ৭ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত একজন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ৫০ জনের বেশি।
রোববার তুরস্কের স্থানীয় নির্বাচন, যা জানা প্রয়োজন
তুরস্কের বাসিন্দারা রোববার স্থানীয় নির্বাচনে ভোট দেবেন। গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের পরবর্তী লক্ষ্য দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র ইস্তাম্বুলের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নেওয়া। আজ শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি। এমন সময় স্থানীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে, যখন দেশটিতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৬৭ দশমিক এক শতাংশে পৌঁছেছে এবং ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার মান একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। এএফপির প্রতিবেদনে এই নির্বাচনের পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। ১৯৯৪ সালে ইস্তাম্বুলের মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন এরদোয়ান। সে সময় থেকে ২০১৯ পর্যন্ত তিনি ও তার মিত্ররা ইস্তাম্বুল শাসন করে এসেছে। তবে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বীতার পর সে বছর রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) প্রার্থী একরাম ইমামোগলু মেয়র নির্বাচিত হলে এই গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের প্রশাসনিক ক্ষমতা এরদোয়ানের হাত থেকে বের হয়ে যায়। বিশ্লেষকদের মতে, ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষের ইস্তাম্বুলের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার আশা ছাড়েননি এরদোয়ান। শহরটি রক্ষণশীল মুসলিম ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। অপরদিকে, এরদোয়ানের জন্যেও ইস্তাম্বুল একটি মান সম্মানের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক বিশ্লেষক বলেন, ইস্তাম্বুল তুরস্কের রাজনীতির সবচেয়ে বড় পুরষ্কার। এরদোয়ান নিজেও একবার বলেন, 'যে ইস্তাম্বুলে জিতে, সে তুরস্ক জিতে নেয়।' এবারের ভোটে এরদোয়ানের দলের পক্ষে সাবেক পরিবেশমন্ত্রী মুরাত কুরুম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ২০২৮ সালে এরদোয়ানের প্রেসিডেন্ট পদের মেয়াদ শেষে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ইস্তাম্বুলের বর্তমান মেয়র ইমামোগলু। তার গ্রহণযোগ্যতা ধরে রাখতে মেয়রের পদে পুনর্নিবাচিত হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বলছেন বিশ্লেষকরা। সিএইচপি দলের প্রার্থীরা জনমত জরিপে অল্প ব্যবধানে এরদোয়ানের দলের চেয়ে এগিয়ে আছে। বিশেষত, রাজধানী আঙ্কারা, ইস্তাম্বুল ও বন্দর নগরী ইজমিরে। ওয়াশিংটন ইন্সটিটিউটের তুরস্ক বিষয়ক প্রকল্পের পরিচালক সোনার কাপাগতায় বলেন, এরদোয়ানের প্রার্থীরা তুরস্কের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে জিততে না পারলে 'এরদোয়ানের রাজনৈতিক দৈন্যতা' প্রকট হবে। বিরোধীদল জয়ী হলে ইমামোগলু একজন গ্রহণযোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন। এ মাসের শুরুতে এরদোয়ান জানান, এই স্থানীয় নির্বাচনই তার শেষ নির্বাচন হতে পারে। যার ফলে, তার দুই দশকের শাসনামলের অবসান হতে পারে বলে ভাবছেন বিশ্লেষকরা। ২০০৩ সালে সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন এরদোয়ান। এর পর থেকে টানা ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তুরস্কের ক্ষমতার শীর্ষে আছেন এই শাসক। তবে কোনো কোনো বিশ্লেষক এরদোয়ানের এই বিদায়ী বার্তাকে রাজনৈতিক ছল হিসেবে অভিহিত করেছেন। তাদের মতে, এরদোয়ান এই বাণীর মাধ্যমে ভোটারদের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করছেন। তুরস্কের কুর্দিপন্থী দল ডিইএম পার্টি ৬০০ সদস্যের পার্লামেন্টে তৃতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল। ২০১৯ সালের মেয়র নির্বাচনে দলটি ইমামোগলুকে নীরব সমর্থন দেয়। সেবার কোনো প্রার্থী না দিলেও এবার দলের পক্ষ থেকে দুইজন প্রার্থী ইস্তাম্বুলের মেয়র পদের জন্য লড়বেন। কুর্দিরা ইস্তাম্বুলের ভোটারদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ। ২০ মার্চ স্পেকট্রাম হাউস পরিচালিত এক মতামত জরিপে জানা গেছে, ডিইএম দলের সমর্থকদের প্রায় অর্ধেক ইমামোগলুকে সমর্থন জানাবেন। রোববার তুরস্কের ভোটাররা মেয়রের পাশাপাশি প্রাদেশিক কাউন্সিল সদস্য ও অন্যান্য স্থানীয় কর্মকর্তাদেরকেও ভোটের মাধ্যমে বেছে নেবেন। ইস্তাম্বুলের ব্যালট পেপারে ৪৯ জন প্রার্থীর নাম রয়েছে এবং এটি প্রায় ৯৭ সেন্টিমিটার লম্বা। কিন্তু এতজন প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও ভোটারদের নিস্পৃহ মনোভাবে পরিবর্তন আসেনি। গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৮৮ দশমিক ৯ শতাংশ। কিন্তু বিরোধী পক্ষের ভোটাররা অনুভব করেন, দেশের রাজনীতিকে প্রভাবিত করা ও সরকারে পরিবর্তন আনার সক্ষমতায় ঘাটতি রয়েছে। এমনকী, সরকারী দলের সমর্থকরাও রাজনীতিবিদদের ওপর ভরসা রাখেন না। তারা মনে করেন, এই রাজনীতিবিদদের দেশের জনমানুষের জীবনের মান উন্নয়ন করার সক্ষমতা নেই।
তুরস্কের বাসিন্দারা রোববার স্থানীয় নির্বাচনে ভোট দেবেন। গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের পরবর্তী লক্ষ্য দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র ইস্তাম্বুলের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নেওয়া।
মস্কোয় নিহত বেড়ে ১১৫, আটক ৪ ‘হামলাকারী’
রাশিয়ার মস্কোর কনসার্ট হলে বন্দুকধারীর হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১৫ জনে দাঁড়িয়েছে। রাশান ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এ ঘটনায় জড়িত চারজনকে আটক করা হয়েছে। রুশ গণমাধ্যমে বলা হয়, এফএসবি সিকিউরিটি সার্ভিসের প্রধান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে জানিয়েছেন যে, এ ঘটনায় আটক ১১ জনের মধ্যে চারজন হামলায় সরাসরি জড়িত ছিলেন। আরওমস্কোর কনসার্ট হলে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত অন্তত ৬০, আহত ১৪৫ গতকাল শুক্রবার রাতে ভয়াবহ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস-কে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা।  আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসের সবচেয়ে সক্রিয় আঞ্চলিক সহযোগীর একটি 'ইসলামিক স্টেট খোরাসান' বা আইএস-কে। ইরান, তুর্কমেনিস্তান ও আফগানিস্তানের অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত খোরাসান অঞ্চলে (পুরোনো নাম) সক্রিয় রয়েছে গোষ্ঠীটি। ২০১৪ সালের শেষ দিকে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে এর আবির্ভাব। চূড়ান্ত পর্যায়ের নৃশংসতা দেখিয়ে দ্রুতই বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসে গোষ্ঠীটি। আরওমস্কোর মিউজিক ভেন্যুতে গোলাগুলি, নিহত ৪০ আহত শতাধিক গতকাল শুক্রবার রাতে ভয়াবহ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস-কে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসের সবচেয়ে সক্রিয় আঞ্চলিক সহযোগীর একটি 'ইসলামিক স্টেট খোরাসান' বা আইএস-কে। ইরান, তুর্কমেনিস্তান ও আফগানিস্তানের অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত খোরাসান অঞ্চলে (পুরোনো নাম) সক্রিয় রয়েছে গোষ্ঠীটি। ২০১৪ সালের শেষ দিকে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে এর আবির্ভাব। চূড়ান্ত পর্যায়ের নৃশংসতা দেখিয়ে দ্রুতই বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসে গোষ্ঠীটি। আরওমস্কোর মিউজিক ভেন্যুতে গোলাগুলি, নিহত ৪০ আহত শতাধিক
রাশিয়ার মস্কোর কনসার্ট হলে বন্দুকধারীর হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
কেটের সাহসের প্রশংসায় রাজা তৃতীয় চার্লস
প্রিন্সেস অব ওয়েলস কেট মিডলটন জানিয়েছেন, তিনি ক্যানসার আক্রান্ত এবং চিকিৎসা নিচ্ছেন। গতকাল শুক্রবার এক ভিডিও বার্তায় কেট বলেন, গেল কয়েক মাসের কঠিন সময়ের পর এ সংবাদ ছিল তার পরিবারের জন্য 'বড় ধাক্কা'। তবে তিনি ইতিবাচক বার্তা দিয়ে বলেন, তিনি ভালো আছেন এবং প্রতিদিন নিজেকে শক্তিশালী অনুভব করছেন।' এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি, তবে কেনসিংটন প্যালেস জানিয়েছে যে তারা প্রিন্সেস অব ওয়েলসের পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। কেটের ভিডিও বার্তা থেকে জানা যায়, জানুয়ারিতে যখন তার পেটে অস্ত্রোপচার হয়েছিল তখন সেখানে কোনো ক্যানসার ছিল না। 'তবে অপারেশনের পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ক্যানসারের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তাই আমার মেডিকেল টিম আমাকে কেমোথেরাপির নেওয়ার পরামর্শ দেয় এবং আমি এখন সেই চিকিত্সার প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছি,' জানান কেট। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে কেমোথেরাপি শুরু হয়। প্যালেস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা ক্যান্সারের ধরনসহ আর কোনো ব্যক্তিগত চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য শেয়ার করবে না। ৪২ বছর বয়সী প্রিন্সেস অব ওয়েলস বলেন, যারা ক্যান্সারে আক্রান্ত তাদের সবার কথা তিনি ভাবছেন। যারা যে রূপেই এই রোগের মুখোমুখি তাদের প্রত্যেকের উদ্দেশ্যে কেট বলেন, 'বিশ্বাস ও আশা হারাবেন না। আপনি একা নন'। কেট এবং উইলিয়াম তাদের সন্তান প্রিন্স জর্জ (১০), প্রিন্সেস শার্লট (৮) এবং প্রিন্স লুই (৫) তাদের স্কুল ছুটি শুরু করার আগ পর্যন্ত ক্যান্সার সম্পর্কে গোপনীয়তা রাখতে চেয়েছিলেন বলেও জানান। গত ফেব্রুয়ারিতে রাজপরিবারের কর্মকর্তারা জানান, রাজা তৃতীয় চার্লস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন, যার ফলে তিনি সব ধরনের জনসমাগম বাতিল করেছেন। বাকিংহাম প্যালেসের এক মুখপাত্র বলেন, ক্যাথরিন যে সাহস দেখিয়েছেন এজন্য রাজা তৃতীয় চার্লস গর্বিত। ক্যাথরিস ক্যানসার ও এর চিকিৎসার বিষয়ে যেভাবে কথা বলেছেন তিনি তার প্রশংসা করেছেন। এই কঠিন সময়ে তিনি ক্যাথরিন ও পরিবারের সঙ্গে আছেন বলে এক বার্তায় জানিয়েছেন। কেটের অসুস্থতার খবরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাধারণ মানুষ ও রাষ্ট্রনেতারা তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করে বার্তা দিয়েছেন। ব্রিটিশ রাজপরিবার ছেড়ে যাওয়া প্রিন্স হ্যারি ও তার স্ত্রী মেগান প্রিন্সেস অব ওয়েলস ক্যাথরিনের 'সুস্বাস্থ্য ও আরোগ্য' কামনা করেছেন। কেটের ভাই জেমস মিডলটন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছোটবেলার একটি ছবি পোস্ট করে বলেন, 'বছরের পর বছর আমরা একসঙ্গে বহু পাহাড় ডিঙিয়েছি। পরিবার হিসাবে, এবারও আমরা একসঙ্গে এটি পার করব।' যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক কেটের দ্রুত এবং পুরোপুরি সুস্থতা কামনা করেছেন। আরোগ্য চেয়ে বার্তা পাঠিয়েছে হোয়াইট হাউস। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্যানসার থেকে দ্রুত ও পুরোপুরি সুস্থতা কামনা করে বলেন, 'আমি ও জিল আরও কোটি মানুষের সঙ্গে আপনার পুরোপুরি সুস্থতা কামনা করছি।' যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন এক্সে লিখেছেন, 'কেট তুমি সাহসী আর আমরা তোমাকে ভালোবাসি।' ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাঁখো, কানাডার প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডো কেটের সুস্থতা কামনা করে বার্তা দিয়েছেন।
প্রিন্সেস অব ওয়েলস কেট মিডলটন জানিয়েছেন, তিনি ক্যানসার আক্রান্ত এবং চিকিৎসা নিচ্ছেন।
মস্কোর কনসার্ট হলে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত অন্তত ৬০, আহত ১৪৫
রাশিয়ার মস্কোর কনসার্ট হলে বন্দুকধারীর হামলায় ৬০ জনের বেশি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ১৪৫ জন। রাশান ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রয়টার্স জানায়, গতকাল শুক্রবার রাতে ছদ্মবেশি পাঁচ বন্দুকধারী কনসার্ট হলে চলমান অনুষ্ঠানের মধ্যে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতারি গুলি চালায়। রুশ সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, হামলাকারীরা গুলি করার পাশাপাশি বিস্ফোরক ব্যবহার করেছে। এতে ক্রোকাস সিটি হলে আগুন ধরে যায়। ধসে পড়ে হলের ছাদ। রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাশকো জানিয়েছেন, পাঁচ শিশুসহ ১১৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৬০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রতিনিয়ত আপডেট নিচ্ছেন। রয়টার্স জানায়, হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তবে এ বিষয়ে এখনও কিছু জানায়নি রাশিয়া।
রাশিয়ার মস্কোর কনসার্ট হলে বন্দুকধারীর হামলায় ৬০ জনের বেশি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ১৪৫ জন।
মস্কোর মিউজিক ভেন্যুতে গোলাগুলি, নিহত ৪০ আহত শতাধিক
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর ক্রাসনোগোরস্ক এলাকার ক্রোকাস সিটি হল মিউজিক ভেন্যুতে ভয়াবহ গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। রাশিয়ার ফেডালের সিকিউরিটি সার্ভিসের (এফএসবি) বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, এ ঘটনায় ৪০ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। রয়টার্স বলছে, ছদ্মবেশী পাঁচ বন্দুকধারী ওই ভেন্যুতে চলমান একটি কনসার্টে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি চালায়। সেসময় তারা সেখানে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্নগোপনের চেষ্টা করে। 'পিকনিক' নামে একটি ব্যান্ড সেসময় পারফর্ম করছিল। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, হঠাৎ তাদের পেছন থেকে গুলির শব্দ শোনা যায়। তার মতে, গুলির বিস্ফোরণ হতে থাকে। রুশ সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, হামলাকারীরা গুলি করার পাশাপাশি বিস্ফোরক ব্যবহার করেছে। এতে ক্রোকাস সিটি হলে আগুন ধরে যায়। ধসে পড়েছে হলের ছাদ। মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন একে 'ভয়াবহ ট্র্যাজেডি' এবং রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে 'রক্তাক্ত সন্ত্রাসী হামলা' হিসেবে উল্লেখ করেছে। এ ঘটনার পরপরই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সহযোগী মাইখাইলো পোডোলিয়াক এক টেলিগ্রাম বার্তায় বলেছেন, 'বিষয়টি পরিষ্কার করি, এ ঘটনার সঙ্গে ইউক্রেনের কোনো সম্পর্ক নেই।' তবে দুই সপ্তাহ আগে 'মস্কোয় কনসার্টসহ বৃহৎ জমায়েতে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা চলছে' এমন সতর্কবার্তা জারি করেছিল সেখানকার মার্কিন দূতাবাস। সেসময় মস্কোয় অবস্থানকারী মার্কিন নাগরিকদের 'পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা বড় জমায়েত এড়িয়ে চলার' পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর ক্রাসনোগোরস্ক এলাকার ক্রোকাস সিটি হল মিউজিক ভেন্যুতে ভয়াবহ গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে রাশিয়া ও চীনের ভেটো
গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রস্তাবে আজ শুক্রবার ভেটো দিয়েছে রাশিয়া ও চীন। এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলকে কোনো প্রকার চাপে না রেখে নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আনায় ওয়াশিংটনকে উপহাস করে মস্কো জানিয়েছে যে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের এ 'ভণ্ডামি' পর্যবেক্ষণ করছে। এর আগে, নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির একাধিক প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। আজ যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে ভেটো দেয় রাশিয়া ও চীন, আলজেরিয়া বিপক্ষে ভোট দিয়েছে এবং গায়ানা বিরত ছিল। স্থায়ী সদস্য ফ্রান্স ও ব্রিটেনসহ নিরাপত্তা পরিষদের অন্য ১১ সদস্য পক্ষে ভোট দিয়েছে। জাতিসংঘে রুশ রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, 'ইসরায়েলের লাগাম টেনে ধরার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কিছুই করছে না।' 'গাজাকে পৃথিবী থেকে কার্যত নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার পর' যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আনায় ওয়াশিংটনকে উপহাসও করেন তিনি। ভাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, 'আমরা যুক্তরাষ্ট্রের চিরাচরিত এই ভণ্ডামি পর্যবেক্ষণ করছি।' তিনি বলেন, 'আমেরিকানরা অতিমাত্রায় রাজনৈতিক, তাদের উদ্দেশ্য ভোটারদের নিয়ে খেলা এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির কথা উল্লেখ করে তাদের সামনে একটি হাড় ছুড়ে মারা।' 'প্রস্তাবটি ইসরায়েলের দায়মুক্তি নিশ্চিত করবে। খসড়াতে তাদের অপরাধ মূল্যায়ন করা হয়নি', যোগ করেন তিনি। জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড রাশিয়া ও চীনের ভেটোকে 'শুধু নিন্দনীয়ই' নয়, 'তুচ্ছ' বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, 'প্রস্তাবটি কেবল যুক্তরাষ্ট্র এনেছে বলেই রাশিয়া ও চীন এর পক্ষে ভোট দিতে চায়নি।' 'অগ্নিগর্ভ বক্তব্য না দিয়ে আসুন সৎ হোন। আমরা সবাই জানি যে, স্থায়ী কোনো শান্তি আনার জন্য রাশিয়া ও চীন কূটনৈতিকভাবে কিছুই করছে না', যোগ করেন তিনি।
গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রস্তাবে আজ শুক্রবার ভেটো দিয়েছে রাশিয়া ও চীন।
ওয়াশিংটন ডিসিতে বন্দুক হামলায় নিহত ২, আহত ৫
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে বন্দুক হামলায় অন্তত দুই জন নিহত ও পাঁচ জন আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার স্থানীয় সময় সকালে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, স্থানীয় সময় ভোররাত ৩টার দিকে কেনেডি রিক্রিয়েশন সেন্টারের কাছে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে। প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহত অ্যান্টনি ব্রাউনের বাড়ি ওয়াশিংটন ডিসিতে এবং জ্যা লুকসের বাড়ি বাল্টিমোরে। তাদের বয়স ৩২ বছর। মেট্রোপলিটন পুলিশের নির্বাহী সহকারী প্রধান জেফরি ক্যারল গণমাধ্যমকে বলেন, আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তাদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়নি। কে বা কারা গুলি চালিয়েছেন সে বিষয়ে পুলিশ এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি। এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। ঘটনার তদন্ত চলছে। এ সম্পর্কে তথ্য দিয়ে সহায়তাকারীকে ৫০ হাজার ডলার পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে পুলিশ। জেফরি ক্যারল বলেন, 'এই ঘটনা সম্পর্কে কারো কাছে তথ্য থাকলে তা জানানোর অনুরোধ করছি। প্রত্যক্ষদর্শীকে মেট্রোপলিটন পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ থাকলো।'
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে বন্দুক হামলায় অন্তত দুই জন নিহত ও পাঁচ জন আহত হয়েছেন।
‘লোহার ফুসফুসের’ সাহায্যে বেঁচে থাকা সেই ‘পোলিও পল’ মারা গেছেন
সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে 'লোহার ফুসফুসের' ভেতর বেঁচে থাকা 'পোলিও পল' নামে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রের আইনজীবী ও লেখক পল আলেকজান্ডার মারা গেছেন। তার ভাই ফিলিপ আলেকজান্ডারের বরাত দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার সিএনএন জানায়, মৃত্যুকালে পল আলেকজান্ডারের বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। পল আলেকজান্ডারের চিকিৎসা সহায়তার জন্য প্রতিষ্ঠিত 'গোফান্ডমি' পেজে মঙ্গলবার তার মারা যাওয়ার তথ্য জানানো হয়। সেখানে তার ভাই ফিলিপ আলেকজান্ডার জানান, পল আলেকজান্ডারের মৃত্যুর সঠিক কারণ স্পষ্ট নয়। করোনা সংক্রমণ নিয়ে তিন সপ্তাহ আগে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, তবে এ সপ্তাহের পরীক্ষায় ফল নেগেটিভ আসে। ১৯৫২ সালে মাত্র ছয় বছর বয়সে পোলিওতে আক্রান্ত হন পল আলেকজান্ডার। সে বছর যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পোলিও প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন অনুসারে, তখন দেশটিতে ২১ হাজারেরও বেশি মানুষ পোলিওতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ১৯৫৫ সালে পোলিওর টিকা আসে। ১৯৭৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে পোলিওমুক্ত ঘোষণা করা হয়। পোলিওর কারণে পল আলেকজান্ডারের ঘাড় থেকে শরীরের নিচের অংশ অবশ হয়ে যায়। যার ফলে তিনি নিজ থেকে শ্বাস নিতে পারতেন না। শ্বাস নিতে সহায়তার জন্য পলকে ৬০০ পাউন্ড ওজনের ক্যাপসুল আকৃতির একটি যন্ত্রের (আয়রন লাং) ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ক্যাপসুলটি তার মাথা ছাড়া পুরো শরীর ঢেকে রাখে। যন্ত্রটি কৃত্রিম ফুসফুস হিসেবে কাজ করে। পরবর্তী সময়ে উন্নত প্রযুক্তি এলেও পল আলেকজান্ডার এই লোহার ফুসফুস ছাড়তে নারাজ ছিলেন। তার ভাষ্য ছিল, তিনি এই যন্ত্রের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ পল আলেকজান্ডারকে বিশ্বের দীর্ঘতম 'আয়রন ফুসফুসের রোগী' হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে 'লোহার ফুসফুসের' ভেতর বেঁচে থাকা 'পোলিও পল' নামে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রের আইনজীবী ও লেখক পল আলেকজান্ডার মারা গেছেন।
‘বৈষম্যমূলক’ নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করল ভারত
বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে ভারত সরকার। লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে কার্যকর হওয়া এই আইন মুসলমানদের প্রতি বৈষম্যমূলক বলে সমালোচনা রয়েছে। এ আইনের অধীনে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে আশ্রয় নেওয়া অনিবন্ধিত অমুসলিমদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। ব্যাপক প্রতিবাদের মধ্যেই ২০১৯ সালে লোকসভায় আইনটি পাস হওয়ার ৪ বছর নরেন্দ্র মোদির সরকার আজ সিএএ বাস্তবায়নের আদেশ দিয়েছে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে অনিবন্ধিত হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, পার্সি ও জৈন সম্প্রদায়ের অভিবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, কিন্তু মুসলিমরা এর আওতায় পড়ছে না। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, নির্বাচনের আগে পুরো ভারতে সিএএ কার্যকর করা হবে। এই আইনের মাধ্যমে কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হবে না। সিএএ আইন কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোদি সরকার বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে যাওয়া হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি ও খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব দেওয়া শুরু করবে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন 'নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন, ২০২৪ এর অধীনে যোগ্য অভিবাসীরা ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।' এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ আইনের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। তার মতে, এই আইন বৈষম্যপূর্ণ। কলকাতায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'বৈষম্যপূর্ণ যে কোনো কিছুর বিরোধিতা করব। বিধি প্রকাশ হোক, আমরা সেগুলো পড়ব। পরে আমরা এগুলো নিয়ে কথা বলব।' লোকসভায় এই বিল উত্থাপনের পর থেকেই ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত ছিল। যদিও সব সমালোচনা অগ্রাহ্য করেই লোকসভায় বিল পাস করেছে মোদি সরকার। সমালোচকদের দাবি, এমন আইন প্রতিবেশী দেশগুলোর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভুল বার্তা দেবে। কংগ্রেস বলেছে, কোনো নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের বাইরের লোকদের নাগরিকত্ব দেওয়ার এমন আইন ভারতের সংবিধানের মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে ভারত সরকার। লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে কার্যকর হওয়া এই আইন মুসলমানদের প্রতি বৈষম্যমূলক বলে সমালোচনা রয়েছে।
গাজায় এবার আকাশ থেকে ত্রাণের প্যাকেট পড়ে নিহত ৫
অবরুদ্ধ গাজায় এতদিন আকাশ থেকে ফেলা বোমার আঘাতে মানুষ হতাহত হয়ে আসলেও এবার ত্রাণের প্যাকেট পড়ে নিহতের ঘটনা ঘটেছে। আজ শুক্রবার সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, আজ গাজা শহরের পশ্চিমে আল শাতি ক্যাম্পে আকাশ থেকে ফেলা ত্রাণের প্যাকেট মানুষের ওপর পড়ে কমপক্ষে পাঁচজন নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক খাদের আল জানোন সিএনএনকে বলেন, তিনি আল শাতি ক্যাম্পের আকাশে বিমান থেকে ত্রাণের প্যাকেট ফেলতে দেখেছেন। তবে কোন দেশের পক্ষ থেকে এসব ত্রাণ ফেলা হচ্ছিল তা জানা যায়নি। গাজা শহরের আল শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সের জরুরি পরিচর্যা বিভাগের প্রধান মুহাম্মদ আল-শেখ এ ঘটনায় পাঁচজন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গুরুতর আহত কয়েকজন আল শিফা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অবরুদ্ধ গাজায় এতদিন আকাশ থেকে ফেলা বোমার আঘাতে মানুষ হতাহত হয়ে আসলেও এবার ত্রাণের প্যাকেট পড়ে নিহতের ঘটনা ঘটেছে।
ভারতে প্রতি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম কমল ১০০ রুপি
ভারতে প্রতিটি তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) সিলিন্ডারের দাম ১০০ রুপি কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আন্তর্জাতিক নারী দিবস ঘিরে আজ শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া পোস্টে তিনি এই ঘোষণা দেন। পোস্টে নরেন্দ্র মোদি লিখেছেন, আজ নারী দিবসে সরকার এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ১০০ রুপি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে দেশের কোটি পরিবারের আর্থিক বোঝা উল্লেখযোগ্যভাবে লাঘব হবে। এতে বিশেষভাবে উপকৃত হবে নারী শক্তি। 'রান্নার গ্যাসকে আরও সাশ্রয়ী করে তোলার মাধ্যমে আমরা পরিবারগুলোর কল্যাণে সহায়তা করা ও একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিতের লক্ষ্যে কাজ করছি। নারীর ক্ষমতায়ন ও তাদের 'জীবনযাত্রায় স্বাচ্ছন্দ্য' আনতে আমাদের অঙ্গীকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে', লিখেছেন মোদি। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দিল্লিতে ১৪ দশমিক দুই কেজি ওজনের এলপিজি সিলিন্ডারের দাম প্রায় ৯০০ রুপি। মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে ভারতে গত বছর দুইবার এলপিজি সিলিন্ডারে ভর্তুকি বাড়িয়ে ২০০ রুপি থেকে ৩০০ রুপি করা হয়েছে। সবশেষ গতকাল ভারত সরকার নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর জন্য এই ভর্তুকি অব্যাহত রাখার কথাও জানায়। রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভারতের জাতীয় নির্বাচনের আগে নারী ভোটারদের আকৃষ্ট করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ভারতে প্রতিটি তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) সিলিন্ডারের দাম ১০০ রুপি কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ন্যাটোতে যোগ দিলো সুইডেন
উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোটের (ন্যাটো) নতুন সদস্য হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছে সুইডেন। রাশিয়ার ইউক্রেনে আগ্রাসনের মধ্যে গত দুই বছর ধরে আলাপ-আলোচনার মধ্যে বৃহস্পতিবার সুইডেন ন্যাটোর সদস্যপদ পেয়েছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের কাছে চূড়ান্ত নথিপত্র হস্তান্তর করেন। এটি ছিল সুইডেনের ন্যাটো জোটে যোগদানের শেষ ধাপ। এসব নথি পাওয়ার পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, 'যারা অপেক্ষা করে তারা ভাল কিছু পায়।' 'এটি সুইডেনের জন্য, আমাদের জোটের জন্য এবং ট্রান্সআটলান্টিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত,' বলেন তিনি। স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের সঙ্গে রাশিয়ার ১ হাজার ৩৪০ কিলোমিটার সীমান্ত। এ দুটি দেশের ন্যাটোতে যোগদান রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা বিশ্বের একটি অতিরিক্ত চাপ। সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টারসন বলেছেন, 'আজ সত্যিই একটি ঐতিহাসিক দিন। সুইডেন এখন ন্যাটোর সদস্য।' সুইডেন ন্যাটোর মূল্যবোধ-গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, আইনের শাসন ধারণ ও প্রচার করে বলে উল্লেখ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন।
উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোটের (ন্যাটো) নতুন সদস্য হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছে সুইডেন।
অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন জেলেনস্কি ও গ্রিক প্রধানমন্ত্রী
রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোতাকিস। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক সূত্রের বরাত দিয়ে সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী বন্দরনগরী ওডেসায় জেলেনস্কি ও কিরিয়াকোস মিৎসোতাকিসের অবস্থান থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে আঘাত হানে ক্ষেপণাস্ত্রটি। সেসময় গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ওডেসা শহর পরিদর্শনে গিয়েছিল জেলেনস্কির কনভয়। ক্ষেপণাস্ত্রটি আঘাত হানার পর তারা আকাশে 'মাশরুম ক্লাউড'র মতো ধোঁয়া উড়তে দেখেন বলে জানিয়েছে সূত্র। ইউক্রেনীয় নৌবাহিনীর মুখপাত্র দিমিত্রো প্লেটেনচুক সিএনএনকে বলেন, এ ঘটনায় জেলেনস্কি ও কিরিয়াকোস মিৎসোতাকিসের কোনো ক্ষতি না হলেও অপর পাঁচজন নিহত এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। জেলেনস্কি প্রায়শই সম্মুখসারির যুদ্ধক্ষেত্র পরিদর্শনে যান এবং রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গত দুই বছরে কয়েক ডজন বিশ্বনেতাকে ইউক্রেনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, তবে গতকালের হামলাটি ছিল তার জন্য খুবই গুরুতর। হামলার পর ওডেসায় এক বিবৃতিতে জেলেনস্কি বলেন, 'আজ আমরা এখানে হামলা হতে দেখেছি। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন যে, আমরা কাদের মোকাবিলা করছি, যারা কোথায় আঘাত করছে সে সম্পর্কে কোনো চিন্তা-ভাবনাই করছে না। আমি এখনো সর্বশেষ খবর পাইনি, তবে জানি যে- সেখানে অনেকেই নিহত এবং আহত হয়েছেন।' 'প্রথমত আমাদের নিজেদের রক্ষা করতে হবে। এর জন্য আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজন', যোগ করেন তিনি। গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোতাকিস বলেন, 'রুশ হামলায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত শহর ওডেসা পরিদর্শনকালে হঠাৎ বিমান হামলার সাইরেন শুনে আমরা গাড়িতে উঠে পড়ি এবং পরক্ষণেই বড় বিস্ফোরণের শব্দ পাই।' 'এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, ইউক্রেনে সত্যিকারের যুদ্ধ চলছে। এখানে প্রতিটি দিনই যুদ্ধের এবং এতে কেবল সম্মুখসারির যোদ্ধারাই ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছেন না, নিরীহ নাগরিকদের জীবনও হুমকির মুখে', বলেন তিনি। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা স্বীকার করে জানিয়েছে, মস্কোর স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে ওই হামলা চালানো হয়।
রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোতাকিস।
জুলফিকার আলী ভুট্টো ন্যায়বিচার পাননি: পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট
পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট দেশটির প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর বিচার, সাজা ও মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে বলেছেন, তিনি 'ন্যায্য বিচারের' সুযোগ পাননি। জিও নিউজ জানায়, আজ বুধবার পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি (সিজেপি) কাজী ফয়েজ ঈসার নেতৃত্বে শীর্ষ আদালতের নয় সদস্যের বেঞ্চ সাজা পুনর্বিবেচনা ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভুট্টোর মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে এই মন্তব্য করেছে। ১৯৭৮ সালে জুলফিকার আলী ভুট্টোকে মৃত্যুদণ্ড দেন লাহোর হাইকোর্টের চার সদস্যের একটি বেঞ্চ। পরে ওই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা হয়েছিল। সর্বোচ্চ আদালতও রায় বহাল রাখলে ১৯৭৯ সালে ভুট্টোর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। সে সময় পাকিস্তানে জেনারেল জিয়াউল হকের অধীনে সামরিক শাসন চলছিল। ১৯৭৭ সালে ভুট্টো সরকারকে হটিয়ে দেশটির ক্ষমতা দখল করেছিলেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউল হক। অনেকেই মনে করেন, ভুট্টোর মৃত্যুদণ্ডের সাজার পেছনে জিয়াউল হকের হাত ছিল। এই ঘটনাকে 'জুডিশিয়াল কিলিং'বা বিচার-বিভাগীয় হত্যাকাণ্ড বলে অভিহিত করেছে ভূট্টোর দল পিপিপি। মৃত্যুদণ্ডের ৪৫ বছর পর আজ বুধবার সংক্ষিপ্ত আদেশ ঘোষণায় প্রধান বিচারপতি ঈসা বলেন, 'জুলফিকার আলী ভুট্টো ন্যায্য বিচার পাননি। তার বিচার যথাযথ প্রক্রিয়ায় সাংবিধানিক নিয়মে হয়নি।' প্রধান বিচারপতি কাজী ফয়েজ ঈসা রায়ের সরাসরি সম্প্রচারে বলেন, তার নেতৃত্বাধীন নয় সদস্যের বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে এ দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'সুষ্ঠু বিচার এবং যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে এর কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি।' পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'এটি একটি ইতিবাচক অগ্রগতি যে, একটি আদালতের করা ভুল আদালতের মাধ্যমেই সংশোধন করা হলো।' এর আগে, ২০১১ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের সংবিধানের ১৮৬ অনুচ্ছেদের অধীনে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পুনর্বিবেচনার বিষয়ে শীর্ষ আদালতের মতামত চেয়ে রেফারেন্স পাঠান দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি। জুলফিকার আলী ভুট্টো পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রতিষ্ঠাতা। তার মেয়ে পাকিস্তানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো এখন দলটির প্রধান। বেনজির ভুট্টোর স্বামী আসিফ আলী জারদারি। বেনজির নিজেও ২০০৭ সালে আততায়ীর গুলিতে প্রাণ হারান। তার হত্যার জন্য কে দায়ী এ নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা।
পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট দেশটির প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর বিচার, সাজা ও মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে বলেছেন, তিনি 'ন্যায্য বিচারের' সুযোগ পাননি।
‘অস্তিত্ব সংকটে’ মিয়ানমারের সামরিক সরকার
মিয়ানমারে নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে দেশটির সামরিক বাহিনী ক্ষমতা নেওয়ার তিন বছরের মাথায় পরিস্থিতি এতটাই পাল্টে গেছে যে, এখন শক্তিশালী এই বাহিনীটিকেই ভুগতে হচ্ছে 'অস্তিত্ব সংকটে'। গত কয়েক মাস ধরে সরকারবিরোধী ও জাতিগত সশস্ত্র বিদ্রোহীদের হাতে সেনাদের ক্রমাগত পরাজয়ের কারণে সেনা শাসক মিন অং হ্লাইংয়ের নেতৃত্ব শুধু নয়, তার সরকারের অস্তিত্ব এখন প্রশ্নের মুখে। মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের তৃতীয় বছর পূর্তির দিনে তথা গত ১ ফেব্রুয়ারি ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট অব পিস'র প্রতিবেদনে বলা হয়, তিন বছর পর মিয়ানমারের জেনারেলরা 'অস্তিত্ব সংকটে' পড়েছেন। এতে আরও বলা হয়, একদিকে সেনাবিরোধীদের মনোবল যেমন চাঙা হচ্ছে, অন্যদিকে জনবল সংকটে পড়ছে সেনাবাহিনী। জাতিসংঘের বরাত দিয়ে সম্প্রতি ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, মিয়ানমারের তিন ভাগের দুই ভাগ অঞ্চল সেনাবিরোধী সংঘাতে জর্জরিত। সামাজিক মাধ্যমের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি আরও জানায়, সামরিক সরকার সমর্থিত ব্যক্তিরাও সেনাপ্রধানের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। সেনাদের শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত মান্দালয় অঞ্চলেও সেনা শাসকের পদত্যাগের দাবিতে সমাবেশ হওয়ার তথ্যও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে মনে হচ্ছে— মিয়ানমারের সামরিক সরকার শুধু 'অস্তিত্ব সংকটে'ই নেই, তাদেরকে হয়ত 'পালানোর পথও খুঁজতে হচ্ছে'। সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ গত সোমবার থাইল্যান্ড থেকে প্রকাশিত মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতী জানিয়েছে, মিয়ানমারে সামরিক সরকারবিরোধী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) ও জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর সদস্যদের হাতে গত তিন দিনে দেশটির ক্ষমতাসীন সামরিক বাহিনীর এক ডজনের বেশি সদস্য নিহত হয়েছেন। তারা তিনটি ঘাঁটিও হারিয়েছে। এসব ঘটনা ঘটেছে কাচিন ও রাখাইন রাজ্যে এবং মান্দালায়, সাগাইং, মগওয়ে ও তানিনথারি অঞ্চলে। বিদ্রোহীদের কাছ থেকে এসব তথ্য নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, তাৎক্ষণিকভাবে কয়েকটি ঘটনা যাচাই করা যায়নি। স্থানীয় কাচিন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে প্রতিবেদন বলা হয়, কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি ও কাচিন অঞ্চলের পিডিএফ যৌথভাবে মাঝি গুং এলাকায় তিনটি সেনাঘাঁটি অবরোধ করেছিল। এসব ঘাঁটি ছিল সেনাদের হালকা পদাতিক বাহিনীর। 'রাখাইন রাজ্যে সংঘর্ষ চলছে' উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত শনিবার থেকে রাজ্যের রাজধানী সিত্তের কাছে পনাংইয়ুন শহরে সেনাদের পদাতিক বাহিনীর ঘাঁটি লক্ষ্য করে আরাকান আর্মির সদস্যরা ক্রমাগত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এটি পনাংইয়ুন শহরে সেনাদের সর্বশেষ ঘাঁটি। আরাকান আর্মি এই রাজ্যের অন্যতম বড় শহর মংডুর উত্তরে ইয়ান অং পিন সেনাঘাঁটি অবরোধের চেষ্টা করছে বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, গত শনিবার তানিনথারি অঞ্চলে পিডিএফ সদস্যদের হামলায় সেনা ও সেনা-সমর্থিত মিলিশিয়াদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সংঘর্ষে অন্তত এক ডজন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। অনেক গোলাবারুদ বিদ্রোহীদের দখলে এসেছে। এ ছাড়াও, সাগাইং, মগওয়ে ও মান্দালায় বিদ্রোহীদের ক্রমাগত হামলার মুখে পড়ছে সেনারা। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির সদস্যরা। ছবি: দ্য ইরাবতী থেকে নেওয়া 'সরকারহীন' মিয়ানমার গত ১ মার্চ থাইল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম ব্যাংকক পোস্ট'র মতামতে চুলালংক্রন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ইনস্টিটিউট অব সিকিউরিটি অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের জ্যেষ্ঠ ফেলো অধ্যাপক থিতিনান পংসুধিরাক মিয়ানমারকে 'সরকারহীন' রাষ্ট্র হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। কেননা, তার দৃষ্টিতে সে দেশে এখন সরকারবিরোধীরাই শক্ত অবস্থানে। তিনি বলেন, সামরিক অভ্যুত্থানের তিন বছর পর এটা স্পষ্ট যে, সেনারা ক্ষমতা হারানোর দ্বারপ্রান্তে। প্রথমদিকে, হাতে গোণা কয়েকজন বিশ্লেষকই এমন দৃশ্য কল্পনা করতে পেরেছিলেন। তার মতে, বিদ্রোহীদের হাতে মিয়ানমারের চৌকস সামরিক বাহিনীর ছোট ছোট পরাজয় অভ্যুত্থানের প্রথম বছর থেকে শুরু হলেও জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে সেনাবিরোধী সংগঠনগুলোর ঐক্যমতের ফলে দেশটির অধিকাংশ এলাকা এখন তারা নিয়ন্ত্রণে নিতে পেরেছে। অধ্যাপক থিতিনান পংসুধিরাক আরও বলেন, সেনাবাহিনী এখন আর মিয়ানমারের একক ক্ষমতাধর সংস্থা নয়। যদিও সরকারিভাবে সেনারা এখনো মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্ব করছে, তবে তারা প্রতিদিনই বিদ্রোহীদের কাছে একটু একটু করে ক্ষমতা হারাচ্ছে। মিয়ানমারের জনগণের কাছে এখন তাদের গ্রহণযোগ্যতা প্রায় শূন্যের কোঠায়। শুধু কয়েকটি বড় শহর সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আছে উল্লেখ করে তিনি জানান, সেসব শহরও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। মিয়ানমারের শান রাজ্যে কেএনডিএফ’র সদস্যরা। ছবি: দ্য ইরাবতী থেকে নেওয়া চীন ও থাইল্যান্ডের ভূমিকা গত রোববার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, গত শনিবার থাইল্যান্ডের পার্লামেন্টে মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দুই দিনের সেমিনার হয়। মিয়ানমারের সামরিক সরকারের আপত্তি সত্ত্বেও সেখানে সে দেশের সরকারবিরোধীরা অংশ নেন। মিয়ানমারের ছায়া সরকার ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি) ও জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা বক্তব্য রেখেছিলেন। সেখানে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের পক্ষ থেকে কেউ অংশ তো নেয়নি, উল্টো এর বিরোধিতা করেছে। মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বার্তা সংস্থাটির কাছে কোনো মন্তব্য করেনি। এ বিষয়ে থাইল্যান্ডের থামাসাত বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণপূর্ব এশিয়াবিষয়ক গবেষক দুলিয়াপাক প্রিচারুশ বার্তা সংস্থাটিকে বলেন, 'পার্লামেন্ট কমিটি গণতান্ত্রিক দলগুলোর জন্য আলোচনার জায়গা করে দিয়েছে।' সেমিনারে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পারনপ্রি বাহিদ্ধা-নুকারার মূল প্রবন্ধ পড়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করা হয়। তবে এর কোনো ব্যাখ্যা না পাওয়া গেলেও মিয়ানমারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে যে থাই সরকারের ভাবনা আছে, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিতে এর 'বড় প্রতিবেশী' বা 'অভিভাবক' হিসেবে পরিচিত চীনের ভূমিকা নিয়ে জার্মান সংবাদমাধ্যমে ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে— 'মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধে চীন দুই পক্ষের সঙ্গেই যোগাযোগ রেখে চলছে'। ২০২১ সালে সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত মিয়ানমারের জাতীয় সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন মার অং গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, 'চীন সরকার সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখার পাশাপাশি এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য সব পক্ষকে চাপ দিচ্ছে।' এ বিষয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'চীন দুই পক্ষকেই নিয়ে খেলছে'। যুক্তরাষ্ট্রের ইনস্টিটিউট অব পিসের মিয়ানমার কর্মসূচির কান্ট্রি ডিরেক্টর জাসোন টাওয়ার সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, 'চীন একদিকে সামরিক সরকারের বিরোধীদের সহযোগিতা করছে। অন্যদিকে, সামরিক সরকারকে দিয়ে বিরোধীদের চাপে রাখছে।' 'চীন এখনো মিয়ানমারের সামরিক সরকারের সঙ্গে ব্যবসা করছে' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'একইসঙ্গে সরকারবিরোধীদের ক্ষমতাসীন জেনারেলদের সঙ্গে ব্যবসা করার জন্য চাপ দিচ্ছে।' তিনি মনে করেন, চীন চায় এই দুই বিবদমান পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হোক। এমন পরিস্থিতিতে মনে হয়- আরও কিছুদিন ভবিষ্যতের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে মিয়ানমারে সেনাদের শেষ পরিণতি কী হতে যাচ্ছে তা জানার জন্য। গত সোমবার থাইল্যান্ড থেকে প্রকাশিত মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতী জানিয়েছে, মিয়ানমারে সামরিক সরকারবিরোধী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) ও জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর সদস্যদের হাতে গত তিন দিনে দেশটির ক্ষমতাসীন সামরিক বাহিনীর এক ডজনের বেশি সদস্য নিহত হয়েছেন। তারা তিনটি ঘাঁটিও হারিয়েছে। এসব ঘটনা ঘটেছে কাচিন ও রাখাইন রাজ্যে এবং মান্দালায়, সাগাইং, মগওয়ে ও তানিনথারি অঞ্চলে। বিদ্রোহীদের কাছ থেকে এসব তথ্য নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, তাৎক্ষণিকভাবে কয়েকটি ঘটনা যাচাই করা যায়নি। স্থানীয় কাচিন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে প্রতিবেদন বলা হয়, কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি ও কাচিন অঞ্চলের পিডিএফ যৌথভাবে মাঝি গুং এলাকায় তিনটি সেনাঘাঁটি অবরোধ করেছিল। এসব ঘাঁটি ছিল সেনাদের হালকা পদাতিক বাহিনীর। 'রাখাইন রাজ্যে সংঘর্ষ চলছে' উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত শনিবার থেকে রাজ্যের রাজধানী সিত্তের কাছে পনাংইয়ুন শহরে সেনাদের পদাতিক বাহিনীর ঘাঁটি লক্ষ্য করে আরাকান আর্মির সদস্যরা ক্রমাগত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এটি পনাংইয়ুন শহরে সেনাদের সর্বশেষ ঘাঁটি। আরাকান আর্মি এই রাজ্যের অন্যতম বড় শহর মংডুর উত্তরে ইয়ান অং পিন সেনাঘাঁটি অবরোধের চেষ্টা করছে বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, গত শনিবার তানিনথারি অঞ্চলে পিডিএফ সদস্যদের হামলায় সেনা ও সেনা-সমর্থিত মিলিশিয়াদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সংঘর্ষে অন্তত এক ডজন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। অনেক গোলাবারুদ বিদ্রোহীদের দখলে এসেছে। এ ছাড়াও, সাগাইং, মগওয়ে ও মান্দালায় বিদ্রোহীদের ক্রমাগত হামলার মুখে পড়ছে সেনারা। 'সরকারহীন' মিয়ানমার গত ১ মার্চ থাইল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম ব্যাংকক পোস্ট'র মতামতে চুলালংক্রন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ইনস্টিটিউট অব সিকিউরিটি অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের জ্যেষ্ঠ ফেলো অধ্যাপক থিতিনান পংসুধিরাক মিয়ানমারকে 'সরকারহীন' রাষ্ট্র হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। কেননা, তার দৃষ্টিতে সে দেশে এখন সরকারবিরোধীরাই শক্ত অবস্থানে। তিনি বলেন, সামরিক অভ্যুত্থানের তিন বছর পর এটা স্পষ্ট যে, সেনারা ক্ষমতা হারানোর দ্বারপ্রান্তে। প্রথমদিকে, হাতে গোণা কয়েকজন বিশ্লেষকই এমন দৃশ্য কল্পনা করতে পেরেছিলেন। তার মতে, বিদ্রোহীদের হাতে মিয়ানমারের চৌকস সামরিক বাহিনীর ছোট ছোট পরাজয় অভ্যুত্থানের প্রথম বছর থেকে শুরু হলেও জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে সেনাবিরোধী সংগঠনগুলোর ঐক্যমতের ফলে দেশটির অধিকাংশ এলাকা এখন তারা নিয়ন্ত্রণে নিতে পেরেছে। অধ্যাপক থিতিনান পংসুধিরাক আরও বলেন, সেনাবাহিনী এখন আর মিয়ানমারের একক ক্ষমতাধর সংস্থা নয়। যদিও সরকারিভাবে সেনারা এখনো মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্ব করছে, তবে তারা প্রতিদিনই বিদ্রোহীদের কাছে একটু একটু করে ক্ষমতা হারাচ্ছে। মিয়ানমারের জনগণের কাছে এখন তাদের গ্রহণযোগ্যতা প্রায় শূন্যের কোঠায়। শুধু কয়েকটি বড় শহর সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আছে উল্লেখ করে তিনি জানান, সেসব শহরও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। মিয়ানমারের শান রাজ্যে কেএনডিএফ’র সদস্যরা। ছবি: দ্য ইরাবতী থেকে নেওয়া চীন ও থাইল্যান্ডের ভূমিকা গত রোববার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, গত শনিবার থাইল্যান্ডের পার্লামেন্টে মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দুই দিনের সেমিনার হয়। মিয়ানমারের সামরিক সরকারের আপত্তি সত্ত্বেও সেখানে সে দেশের সরকারবিরোধীরা অংশ নেন। মিয়ানমারের ছায়া সরকার ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি) ও জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা বক্তব্য রেখেছিলেন। সেখানে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের পক্ষ থেকে কেউ অংশ তো নেয়নি, উল্টো এর বিরোধিতা করেছে। মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বার্তা সংস্থাটির কাছে কোনো মন্তব্য করেনি। এ বিষয়ে থাইল্যান্ডের থামাসাত বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণপূর্ব এশিয়াবিষয়ক গবেষক দুলিয়াপাক প্রিচারুশ বার্তা সংস্থাটিকে বলেন, 'পার্লামেন্ট কমিটি গণতান্ত্রিক দলগুলোর জন্য আলোচনার জায়গা করে দিয়েছে।' সেমিনারে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পারনপ্রি বাহিদ্ধা-নুকারার মূল প্রবন্ধ পড়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করা হয়। তবে এর কোনো ব্যাখ্যা না পাওয়া গেলেও মিয়ানমারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে যে থাই সরকারের ভাবনা আছে, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিতে এর 'বড় প্রতিবেশী' বা 'অভিভাবক' হিসেবে পরিচিত চীনের ভূমিকা নিয়ে জার্মান সংবাদমাধ্যমে ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে— 'মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধে চীন দুই পক্ষের সঙ্গেই যোগাযোগ রেখে চলছে'। ২০২১ সালে সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত মিয়ানমারের জাতীয় সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন মার অং গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, 'চীন সরকার সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখার পাশাপাশি এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য সব পক্ষকে চাপ দিচ্ছে।' এ বিষয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'চীন দুই পক্ষকেই নিয়ে খেলছে'। যুক্তরাষ্ট্রের ইনস্টিটিউট অব পিসের মিয়ানমার কর্মসূচির কান্ট্রি ডিরেক্টর জাসোন টাওয়ার সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, 'চীন একদিকে সামরিক সরকারের বিরোধীদের সহযোগিতা করছে। অন্যদিকে, সামরিক সরকারকে দিয়ে বিরোধীদের চাপে রাখছে।' 'চীন এখনো মিয়ানমারের সামরিক সরকারের সঙ্গে ব্যবসা করছে' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'একইসঙ্গে সরকারবিরোধীদের ক্ষমতাসীন জেনারেলদের সঙ্গে ব্যবসা করার জন্য চাপ দিচ্ছে।' তিনি মনে করেন, চীন চায় এই দুই বিবদমান পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হোক। এমন পরিস্থিতিতে মনে হয়- আরও কিছুদিন ভবিষ্যতের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে মিয়ানমারে সেনাদের শেষ পরিণতি কী হতে যাচ্ছে তা জানার জন্য। গত ১ মার্চ থাইল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম ব্যাংকক পোস্ট'র মতামতে চুলালংক্রন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ইনস্টিটিউট অব সিকিউরিটি অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের জ্যেষ্ঠ ফেলো অধ্যাপক থিতিনান পংসুধিরাক মিয়ানমারকে 'সরকারহীন' রাষ্ট্র হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। কেননা, তার দৃষ্টিতে সে দেশে এখন সরকারবিরোধীরাই শক্ত অবস্থানে। তিনি বলেন, সামরিক অভ্যুত্থানের তিন বছর পর এটা স্পষ্ট যে, সেনারা ক্ষমতা হারানোর দ্বারপ্রান্তে। প্রথমদিকে, হাতে গোণা কয়েকজন বিশ্লেষকই এমন দৃশ্য কল্পনা করতে পেরেছিলেন। তার মতে, বিদ্রোহীদের হাতে মিয়ানমারের চৌকস সামরিক বাহিনীর ছোট ছোট পরাজয় অভ্যুত্থানের প্রথম বছর থেকে শুরু হলেও জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে সেনাবিরোধী সংগঠনগুলোর ঐক্যমতের ফলে দেশটির অধিকাংশ এলাকা এখন তারা নিয়ন্ত্রণে নিতে পেরেছে। অধ্যাপক থিতিনান পংসুধিরাক আরও বলেন, সেনাবাহিনী এখন আর মিয়ানমারের একক ক্ষমতাধর সংস্থা নয়। যদিও সরকারিভাবে সেনারা এখনো মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্ব করছে, তবে তারা প্রতিদিনই বিদ্রোহীদের কাছে একটু একটু করে ক্ষমতা হারাচ্ছে। মিয়ানমারের জনগণের কাছে এখন তাদের গ্রহণযোগ্যতা প্রায় শূন্যের কোঠায়। শুধু কয়েকটি বড় শহর সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আছে উল্লেখ করে তিনি জানান, সেসব শহরও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। চীন ও থাইল্যান্ডের ভূমিকা গত রোববার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, গত শনিবার থাইল্যান্ডের পার্লামেন্টে মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দুই দিনের সেমিনার হয়। মিয়ানমারের সামরিক সরকারের আপত্তি সত্ত্বেও সেখানে সে দেশের সরকারবিরোধীরা অংশ নেন। মিয়ানমারের ছায়া সরকার ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি) ও জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা বক্তব্য রেখেছিলেন। সেখানে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের পক্ষ থেকে কেউ অংশ তো নেয়নি, উল্টো এর বিরোধিতা করেছে। মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বার্তা সংস্থাটির কাছে কোনো মন্তব্য করেনি। এ বিষয়ে থাইল্যান্ডের থামাসাত বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণপূর্ব এশিয়াবিষয়ক গবেষক দুলিয়াপাক প্রিচারুশ বার্তা সংস্থাটিকে বলেন, 'পার্লামেন্ট কমিটি গণতান্ত্রিক দলগুলোর জন্য আলোচনার জায়গা করে দিয়েছে।' সেমিনারে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পারনপ্রি বাহিদ্ধা-নুকারার মূল প্রবন্ধ পড়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করা হয়। তবে এর কোনো ব্যাখ্যা না পাওয়া গেলেও মিয়ানমারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে যে থাই সরকারের ভাবনা আছে, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিতে এর 'বড় প্রতিবেশী' বা 'অভিভাবক' হিসেবে পরিচিত চীনের ভূমিকা নিয়ে জার্মান সংবাদমাধ্যমে ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে— 'মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধে চীন দুই পক্ষের সঙ্গেই যোগাযোগ রেখে চলছে'। ২০২১ সালে সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত মিয়ানমারের জাতীয় সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন মার অং গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, 'চীন সরকার সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখার পাশাপাশি এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য সব পক্ষকে চাপ দিচ্ছে।' এ বিষয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'চীন দুই পক্ষকেই নিয়ে খেলছে'। যুক্তরাষ্ট্রের ইনস্টিটিউট অব পিসের মিয়ানমার কর্মসূচির কান্ট্রি ডিরেক্টর জাসোন টাওয়ার সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, 'চীন একদিকে সামরিক সরকারের বিরোধীদের সহযোগিতা করছে। অন্যদিকে, সামরিক সরকারকে দিয়ে বিরোধীদের চাপে রাখছে।' 'চীন এখনো মিয়ানমারের সামরিক সরকারের সঙ্গে ব্যবসা করছে' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'একইসঙ্গে সরকারবিরোধীদের ক্ষমতাসীন জেনারেলদের সঙ্গে ব্যবসা করার জন্য চাপ দিচ্ছে।' তিনি মনে করেন, চীন চায় এই দুই বিবদমান পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হোক। এমন পরিস্থিতিতে মনে হয়- আরও কিছুদিন ভবিষ্যতের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে মিয়ানমারে সেনাদের শেষ পরিণতি কী হতে যাচ্ছে তা জানার জন্য। গত রোববার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, গত শনিবার থাইল্যান্ডের পার্লামেন্টে মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দুই দিনের সেমিনার হয়। মিয়ানমারের সামরিক সরকারের আপত্তি সত্ত্বেও সেখানে সে দেশের সরকারবিরোধীরা অংশ নেন। মিয়ানমারের ছায়া সরকার ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি) ও জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা বক্তব্য রেখেছিলেন। সেখানে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের পক্ষ থেকে কেউ অংশ তো নেয়নি, উল্টো এর বিরোধিতা করেছে। মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বার্তা সংস্থাটির কাছে কোনো মন্তব্য করেনি। এ বিষয়ে থাইল্যান্ডের থামাসাত বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণপূর্ব এশিয়াবিষয়ক গবেষক দুলিয়াপাক প্রিচারুশ বার্তা সংস্থাটিকে বলেন, 'পার্লামেন্ট কমিটি গণতান্ত্রিক দলগুলোর জন্য আলোচনার জায়গা করে দিয়েছে।' সেমিনারে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পারনপ্রি বাহিদ্ধা-নুকারার মূল প্রবন্ধ পড়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করা হয়। তবে এর কোনো ব্যাখ্যা না পাওয়া গেলেও মিয়ানমারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে যে থাই সরকারের ভাবনা আছে, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিতে এর 'বড় প্রতিবেশী' বা 'অভিভাবক' হিসেবে পরিচিত চীনের ভূমিকা নিয়ে জার্মান সংবাদমাধ্যমে ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে— 'মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধে চীন দুই পক্ষের সঙ্গেই যোগাযোগ রেখে চলছে'। ২০২১ সালে সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত মিয়ানমারের জাতীয় সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন মার অং গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, 'চীন সরকার সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখার পাশাপাশি এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য সব পক্ষকে চাপ দিচ্ছে।' এ বিষয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'চীন দুই পক্ষকেই নিয়ে খেলছে'। যুক্তরাষ্ট্রের ইনস্টিটিউট অব পিসের মিয়ানমার কর্মসূচির কান্ট্রি ডিরেক্টর জাসোন টাওয়ার সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, 'চীন একদিকে সামরিক সরকারের বিরোধীদের সহযোগিতা করছে। অন্যদিকে, সামরিক সরকারকে দিয়ে বিরোধীদের চাপে রাখছে।' 'চীন এখনো মিয়ানমারের সামরিক সরকারের সঙ্গে ব্যবসা করছে' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'একইসঙ্গে সরকারবিরোধীদের ক্ষমতাসীন জেনারেলদের সঙ্গে ব্যবসা করার জন্য চাপ দিচ্ছে।' তিনি মনে করেন, চীন চায় এই দুই বিবদমান পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হোক। এমন পরিস্থিতিতে মনে হয়- আরও কিছুদিন ভবিষ্যতের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে মিয়ানমারে সেনাদের শেষ পরিণতি কী হতে যাচ্ছে তা জানার জন্য।
মিয়ানমারে নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে দেশটির সামরিক বাহিনী ক্ষমতা নেওয়ার তিন বছরের মাথায় পরিস্থিতি এতটাই পাল্টে গেছে যে, এখন শক্তিশালী এই বাহিনীটিকেই ভুগতে হচ্ছে 'অস্তিত্ব সংকটে'।
ইউক্রেনে পশ্চিমা সেনা এলে পারমাণবিক যুদ্ধ হবে: পুতিন
পশ্চিমা সেনারা ইউক্রেনের পক্ষে যুদ্ধে অংশ নিলে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে বলে হুমকি দিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার যেসব অস্ত্র রয়েছে তা পাশ্চাত্যের লক্ষবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে ন্যাটোর সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়ানোর ঝুঁকির ব্যাপারে আগেও কথা বলেছেন পুতিন। তবে এবারই প্রথমবারের মতো তিনি পরিষ্কার ভাষায় পশ্চিমা দেশগুলোকে পারমাণবিক যুদ্ধের ব্যাপারে হুঁশিয়ার করলেন। রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ১৯৬২ সালে কিউবায় মিসাইল সংকটের পর থেকে মস্কোর সঙ্গে পাশ্চাত্যের সম্পর্ক সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। কিউবায় পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনকে কেন্দ্র করে তখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার পার্লামেন্ট সদস্য ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সামনে দেওয়া ভাষণে পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধকে রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ সমস্যা বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, এই যুদ্ধে হস্তক্ষেপ কতটা ঝুঁকিপূর্ণ সেটা পশ্চিমা নেতারা উপলব্ধি করতে পারছেন না। এর আগে গত সোমবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ইউক্রেনে ন্যাটো জোটের সেনা পাঠানোর প্রসঙ্গে কথা বলেছিলেন। তিনি বলেন, ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্য দেশের সেনাদের ইউক্রেনে পাঠানো যেতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ব্রিটেনসহ অন্যান্য ন্যাটো সদস্য দেশ সঙ্গে সঙ্গে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। পুতিন হুঁশিয়ার করে বলেন, 'আমাদেরও এমন অস্ত্র রয়েছে যেগুলো পশ্চিমা দেশগুলোর লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। তাদেরকে অবশ্যই এটা উপলব্ধি করতে হবে। তারা পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি তৈরি করছে, যে যুদ্ধ মানব সভ্যতার অন্ত ঘটাতে পারে। তারা এটা বুঝতে পারছে না?' আগামী ১৫-১৭ মার্চ রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রায় নিশ্চিতভাবেই পুতিন আগামী ছয় বছরের জন্য পুনর্নির্বাচিত হতে চলেছেন। নির্বাচনের আগে পুতিন তার ভাষণে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র আধুনিকীকরণ কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, রাশিয়া যেকোনো সময় কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের জন্য তৈরি আছে। নতুন প্রজন্মের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা নিরীক্ষা ও মোতায়েন থাকার কথাও নিশ্চিত করেছেন পুতিন। অতীতে নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ও দ্বিতীয় বিশ্বজুদ্ধে জার্মানির নাৎসি বাহিনীর ব্যর্থ আক্রমণের উদাহরণ টেনে পুতিন বলেন, 'কিন্তু এবার পরিণাম হবে অত্যন্ত ভয়াবহ।'
পশ্চিমা সেনারা ইউক্রেনের পক্ষে যুদ্ধে অংশ নিলে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে বলে হুমকি দিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার যেসব অস্ত্র রয়েছে তা পাশ্চাত্যের লক্ষবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
২৭০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরও দ. কোরিয়ায় কম জন্মহারে নতুন রেকর্ড
দম্পতিদের অধিক সন্তান নিতে উৎসাহিত করতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করেও কম জন্মহারে নতুন রেকর্ড করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। গত বুধবার প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশটিতে ২০২৩ সালে জন্মহার আরও আট শতাংশ কমে শূন্য দশমিক ৭২-এ দাঁড়িয়েছে। এ নিয়ে টানা চারবার দক্ষিণ কোরিয়ার মোট জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে বলে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান। একজন নারী কত সংখ্যক সন্তান নিতে চান, জন্মহার সেই বিষয়টি নির্দেশ করে। দক্ষিণ কোরিয়ার ৫১ মিলিয়ন জনসংখ্যা স্থিতিশীল রাখতে এ হার দুই দশমিক এক হওয়া উচিত। ২০১৮ সাল থেকে দক্ষিণ কোরিয়াই দ্য অর্গানাইজেশন ফর ইকোনোমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) একমাত্র সদস্য রাষ্ট্র, যাদের জন্মহার হার এক শতাংশের নিচে। এমনকি দেশটিতে নারীদের প্রথম সন্তান জন্মদানের গড় বয়স ৩৩ দশমিক ছয় বছর, যা ওইসিডি সদস্যদের মধ্যে সর্বোচ্চ। যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশন অনুসারে, এশিয়ার পঞ্চম-বৃহৎ অর্থনীতির দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় জন্মহারের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ২১০০ সাল মধ্যে জনসংখ্যা প্রায় অর্ধেক হয়ে ২৬ দশমিক আট মিলিয়নে নেমে আসতে পারে। দেশটির জনসংখ্যা শুমারি বিভাগের প্রধান লিম ইয়ং-ইল বলেন, '২০২৩ সালে নবজাতকের সংখ্যা ছিল দুই লাখ ৩০ হাজার, যা আগের বছরের তুলনায় ১৯ হাজার ২০০ কম, হ্রাস পেয়েছে সাত দশমিক সাত শতাংশ।' ২০০৬ সাল থেকে দম্পতিদের অধিক সন্তান ধারণে উৎসাহিত করতে নগদ ভর্তুকি, বেবিসিটিং পরিষেবা ও বন্ধ্যত্ব চিকিৎসা সহায়তাসহ বিভিন্ন প্রকল্পে ২৭০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার। প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের নেতৃত্বাধীন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রশাসন কম জন্মহারের রেকর্ডটিকে উল্টে দিতে বিষয়টিকে জাতীয় অগ্রাধিকার হিসেবে নেওয়ার কথা জানিয়েছে এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী ডিসেম্বরে 'অনন্য ব্যবস্থা' নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু আর্থিক এবং অন্যান্য প্রলোভনও দম্পতিদের বোঝাতে ব্যর্থ হচ্ছে, যারা শিশু লালন-পালন ও সম্পত্তির আকাশ ছোঁয়া ব্যয়, ভালো বেতনের চাকরির অভাব এবং দেশের গলাকাটা শিক্ষা ব্যবস্থাকে বড় পরিবার গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে উল্লেখ করেন। এ ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক কারণকেও দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা। নারীদের ঘর-বাহির দুটোই সামলাতে হয় বলে তাদের মধ্যে সন্তান জন্মদানে অনাগ্রহ বাড়ছে। 'জাতীয় বিলুপ্তির' শঙ্কা কমানোর আশায় দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোও এপ্রিলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পাবলিক হাউসিং এবং আরও সহজ শর্তে ঋণসহ বিভিন্ন পলিসি গ্রহণের ঘোষণা দিচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় বিয়েকে সন্তান জন্মদানের পূর্বশর্ত হিসেবে দেখা হয়। তবে উদ্বেগের বিষয়, সেখানে বিয়ের প্রবণতাও কমেছে। এ ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার ব্যয়কেই প্রধান অন্তরায় হিসেবে ধরা হয়।
দম্পতিদের অধিক সন্তান নিতে উৎসাহিত করতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করেও কম জন্মহারে নতুন রেকর্ড করেছে দক্ষিণ কোরিয়া।
গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে পদত্যাগ করলেন ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী
ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ এশতায়েহ পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। ইসরায়েলের দখলে থাকা পশ্চিমতীরে বিভিন্ন এলাকায় সংঘাত বৃদ্ধি ও গাজায় যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে পদত্যাগের ঘোষণা দেন মোহাম্মদ এশতায়েহ। তার নেতৃত্বাধীন সরকার পশ্চিম তীরের কিছু অংশ শাসন করত। তিনি বলেন, পশ্চিম তীর ও জেরুজালেমে অভূতপূর্ব সংঘাত বৃদ্ধি এবং গাজায় যুদ্ধ, গণহত্যা ও খাদ্যাভাবের প্রেক্ষাপটে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, গাজায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পরবর্তী ধাপে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার জন্য নতুন সরকার ও নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রয়োজন। আল জাজিরার খবরে বলা হয়, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষে রদবদল এবং গাজায় যুদ্ধ–পরবর্তী ফিলিস্তিনকে পরিচালনায় একটি রাজনৈতিক কাঠামোর ব্যাপারে কাজ শুরু করতে মাহমুদ আব্বাসের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপ জোরালো হচ্ছে। তবে মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে গাজাসহ পুরো ফিলিস্তিনের কর্তৃত্ব দেওয়ার বিরোধিতা করছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গত সপ্তাহেও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের একতরফা স্বীকৃতির বিরোধিতা করে নেতানিয়াহুর প্রত্যাখ্যান প্রস্তাবে সমর্থন দেন ইসরায়েলের পার্লামেন্ট সদস্যরা।
ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ এশতায়েহ পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।
ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে গায়ে আগুন দিলেন মার্কিন সেনা
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাসের বাইরে মার্কিন বিমান বাহিনীর এক সদস্য রোববার নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। গতকাল রোববার স্থানীয় সময় দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্মকর্তার বলছেন, গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে নিজের গায়ে আগুন দিয়েছেন ওই বিমান বাহিনীর সদস্য। বিমান বাহিনীর একজন মুখপাত্র জানান, ওই ব্যক্তি বিমান বাহিনীর একজন সক্রিয় সদস্য, তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিস কর্মকর্তা, ডিসি ফায়ার ও ইএমএস অনলাইন পোস্টে জানায়, আগুন নেভানোর পর ওই ব্যক্তিকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিপার্টমেন্টের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। স্থানীয় পুলিশ ও গোয়েন্দা সার্ভিস ঘটনার তদন্ত করছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। মার্কিন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, লাইভ ভিডিও স্ট্রিমিংয়ে এসে ওই ব্যক্তি নিজের গায়ে আগুন দেওয়ার আগে 'ফ্রি প্যালেস্টাইন' এবং 'গণহত্যার সঙ্গে জড়িত হবেন না' বলে জানান। গাজায় গত অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাসের বাইরে মার্কিন বিমান বাহিনীর এক সদস্য রোববার নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। গতকাল রোববার স্থানীয় সময় দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
ভারতে ৯৮৯ কোটি রুপি ব্যয়ে দীর্ঘতম ক্যাবল সেতু নির্মাণ
ভারতের গুজরাটের দ্বারকায় দেশটির দীর্ঘতম ক্যাবল সেতুর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আজ রোববার এনডিটিভি জানায়, ওখা ও ভেট দ্বারকার মধ্যে সংযোগকারী 'সুদর্শন সেতু' নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৯৮৯ কোটি রুপি। ২০১৭ সালের অক্টোবরে ২ দশমিক ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন মোদি। সেসময় তিনি জানান, সেতুটি পুরোনো এবং নতুন দ্বারকার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করবে। সরকারি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৭ দশমিক ২০ মিটার চওড়া চার লেনের সেতুর উভয় পাশে মানুষের হাঁটার জন্য ২ দশমিক ৫০ মিটার চওড়া ফুটপাত রাখা হয়েছে। সেতুটি আগে 'সিগনেচার ব্রিজ' নামে পরিচিত ছিল, পরে এর নাম পরিবর্তন করে 'সুদর্শন সেতু' রাখা হয়। বেট দ্বারকা হলো ওখা বন্দরের কাছের একটি দ্বীপ, যা দ্বারকা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে, যেখানে ভগবান কৃষ্ণের বিখ্যাত দ্বারকাধীশ মন্দির অবস্থিত।
ভারতের গুজরাটের দ্বারকায় দেশটির দীর্ঘতম ক্যাবল সেতুর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
হুতিদের ১৮ অবস্থানে আবারও যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের হামলা
ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ১৮টি অবস্থানে আবারও যৌথ হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। এটি তাদের চতুর্থ যৌথ হামলা বলে আজ রোববার জানিয়েছে বিবিসি। পেন্টাগন জানায়, হুতিদের স্টোরেজ সুবিধা, ড্রোন, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, রাডার এবং হেলিকপ্টারের বিরুদ্ধে শনিবার এসব হামলা চালানো হয়। যুক্তরাজ্য বলছে, হুতিদের আরও অবস্থানে হামলার জন্য মিত্রদের সঙ্গে তারা একযোগে কাজ করছে। যৌথ এক বিবৃতিতে পেন্টাগন জানায়, শনিবার ইয়েমেনের আটটি স্থানে হুতিদের ১৮টি অবস্থানে এই হামলা চালানো হয়। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে এখন পর্যন্ত হুতিরা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক ও নৌ জাহাজের ওপর ৪৫টি হামলা করেছে বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, কানাডা, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস এবং নিউজিল্যান্ডের সহায়তায় হুতিদের বিরুদ্ধে এই হামলা চালানো হয়েছে।
ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ১৮টি অবস্থানে আবারও যৌথ হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।
সাবেক মার্কিন জেনারেলের চোখে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ২ বছর
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর হামলার পর পেরিয়ে গেছে দুই বছর। এখন পর্যন্ত এই হামলা বন্ধের কোনো আভাস পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে যুদ্ধের ভবিষ্যৎ কোন দিকে গড়াচ্ছে, সে বিষয়েও সঠিক কোনো পূর্বাভাস দেওয়া যাচ্ছে না। যুদ্ধের এই পর্যায়ে এসে সার্বিক পরিস্থিতির কিছুটা ধারণা দিয়েছেন সাবেক সিআইএ প্রধান এবং ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধে মার্কিন বাহিনীর কমান্ডিং জেনারেল ডেভিড পেট্রাউস। অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন এই জেনারেলের মতে, দুই বছরে এসে ইউক্রেন যুদ্ধের মোড় ঘুরে গেছে এবং রুশ বাহিনী কিছুটা গতি পেয়েছে। যদিও রুশরা বিস্ময়করভাবে হতাহতের শিকার হয়েছে, তবে ইউক্রেন লড়াইয়ে টিকে থাকতে পারবে যদি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা পায়। রাশিয়ার দখলে থাকা ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ অঞ্চল ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সম্প্রতি ইউক্রেনের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর আভদিভকার দখল নিয়েছে রাশিয়া। একে দীর্ঘদিন পর বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখছে মস্কো। এখন ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী মার্কিন সামরিক সহায়তার অপেক্ষায়। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস জার্মানির মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে বলেছেন, ইউক্রেনের জন্য সহায়তার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। সেই সম্মেলন শেষে ডেভিড পেট্রাউসের সঙ্গে কথা বলেন সিএনএনের জাতীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক পিটার বার্গেন। সেসময় পিটার বার্গেন ডেভিড পেট্রাউসকে জিজ্ঞেস করেন- ইউক্রেন যুদ্ধে কে জিতেছে? পেট্রাউস বলেন, 'বলতে পারছি না যে, উভয় পক্ষই জিতেছে। এখনো রুশদের অর্জনই বেশি। তারা যুদ্ধে ভালো অবস্থানে আছে। ইউক্রেনীয়দের আভদিভকা থেকে সরে যেতে বাধ্য করেছে।' 'এখনো কিছু কিছু অঞ্চলের দখল নিতে রুশরা প্রচুর গোলাবারুদ ব্যবহার করছে। যুদ্ধে তাদের হতাহতের সংখ্যাও অনেক। তা সত্ত্বেও ভ্লাদিমির পুতিনকে বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে দেখা যাচ্ছে না। তিনি বাহিনীতে এখনো অতিরিক্ত নিয়োগ চালিয়ে যেতে সক্ষম বলে মনে হচ্ছে।' পশ্চিমের গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, এখনো রাশিয়ায় যুদ্ধবিরোধী কণ্ঠস্বর তেমন আওয়াজ তুলতে পারেনি, বা বড় ধরনের বিক্ষোভ দানা বাঁধেনি। সম্প্রতি পুতিনের কট্টর সমালোচক অ্যালেক্সি নাভালনি কারাগারে মারা গেছেন। যদিও ক্রেমলিন এতে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। যুদ্ধের আগে ইউক্রেনে পালিয়ে যাওয়া এক রুশ হেলিকপ্টার পাইলটকে স্পেনে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে। এ সম্পর্কেও কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়েছে মস্কো। রাশিয়ান ফেডারেশন মূলত স্ট্যালিনিস্ট একনায়কত্ব ছাড়া আর কিছুই না বলে মনে করেন পেট্রাউস। ইউক্রেন যুদ্ধের শেষ কোথায়? যুদ্ধের প্রথম বছরে ইউক্রেনীয় বাহিনী কিয়েভ, খারকিভ, চেরনিহিভ, সুমি এবং খেরসনের যুদ্ধে জিতেছিল উল্লেখ করে সাবেক সিআইএ প্রধান জেনারেল ডেভিড পেট্রাউস বলেন, 'তবে সময়মত মার্কিন ট্যাঙ্ক না সরবরাহের কারণে জার্মানিও লেপার্ড ট্যাঙ্ক পাঠাতে বিলম্ব করে। এ ছাড়া, সেসময় ইউক্রেনের কাছে পশ্চিমের যুদ্ধ বিমানও ছিল না।' তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ইউক্রেনকে আরও দূরপাল্লার আর্মি ট্যাকটিক্যাল ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা দেওয়া। যাতে তারা রুশ-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে দূরবর্তী লক্ষ্যবস্তুতে সঠিকভাবে আঘাত করতে পারে। যুদ্ধের প্রথম এক বছর বা তারও বেশি সময়ে নিজেদের পুরোপুরি শক্তিমত্তা ধরে রাখতে পারেনি ইউক্রেন, যে কারণে সবদিক থেকে আরও গুছিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে রাশিয়া। কেননা, রাশিয়ার জনসংখ্যা ইউক্রেনের তিনগুণ বেশি ও রুশ অর্থনীতি ইউক্রেনের প্রায় ১০ গুণ বড়। এ পর্যন্ত ইউক্রেনের সবচেয়ে বেশি সাফল্য পশ্চিম কৃষ্ণ সাগরে। যেখানে রুশ ব্ল্যাক সি ফ্লিট সম্ভবত ৩০ শতাংশ ক্ষতির মুখে পড়েছে। ইউক্রেন রাশিয়ান ব্ল্যাক সি ফ্লিটকে কৃষ্ণ সাগরের বাইরে ঠেলে দিতে সক্ষম হয়েছে। এ কারণে অধিকৃত ক্রিমিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সেভাস্তোপলের বন্দর থেকে রুশ নৌবহরের সিংহভাগকে প্রত্যাহার করতে হয়েছে। এর ফলে ইউক্রেন এখনো পশ্চিম কৃষ্ণ সাগর দিয়ে মিশরসহ উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোতে শস্য রপ্তানি করতে পারছে। সম্প্রতি মার্কিন সিনেটর রন জনসন দাবি করেন, এই যুদ্ধে এক লাখ ২০ হাজার রুশ সেনা নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দুই লাখ সেনা। বিপরীতে ইউক্রেনের ৭০ হাজার সেনা নিহত হয়েছেন। আহত সেনার সংখ্যা এক লাখ ২০ হাজারের মতো। গত সপ্তাহে পেন্টাগনও দাবি করে—ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ বাহিনীর হতাহতের সংখ্যা তিন লাখ ১৫ হাজার। এ দাবির বিষয়ে পেট্রাউস বলেন, 'এটি একটি গুরুতর ক্ষতি। তা সত্ত্বেও রাশিয়া তার গ্রামীণ অঞ্চল থেকে বোনাসের ঘোষণা দিয়ে সেনা নিয়োগে সক্ষম বলে মনে হচ্ছে।' 'মনে রাখবেন, পুতিন মস্কো ও সেন্ট পিটার্সবার্গের অভিজাতদের রক্ষা করছেন। যুদ্ধের বোঝা তাদের ওপর পড়ছে না। এটা অনেক বেশি পড়ছে গ্রামীণ এলাকার যুবকদের ওপর।' তিনি মনে করেন, পুতিন এক বছর আগের চেয়ে এখন আরও ভালো অবস্থানে আছেন, এটি অবশ্যই উদ্বেগজনক। কিন্তু ইউক্রেন যদি যুক্তরাষ্ট্রের ৬০ বিলিয়ন ডলার সাহায্যের প্যাকেজটি পায় এবং বাহিনীতে চাহিদামতো জনবল নিয়োগ দিতে পারে, সেক্ষেত্রে মনে হয় শুধু অবস্থান ধরে রাখাই নয়, কিছু ক্ষেত্রে অগ্রগতিও পেতে পারে বলে মনে করেন এই সাবেক শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা। যুদ্ধে ইউক্রেন হেরে গেলে কী হবে? পেট্রাউস বলেন, পুতিন যে কেবল ইউক্রেনেই থামবেন না, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে প্রশ্ন হলো—অন্যত্র মোতায়েনের জন্য তার বাহিনীকে উজ্জীবিত করতে কতক্ষণ লাগবে? মলদোভা অবশ্যই টার্গেটে থাকবে। কেননা দেশটির ট্রান্সনিস্ট্রিয়া এলাকায় এখনো দেড় হাজার বা তার বেশি রুশ সেনা আছে। তবে পুতিনের মনোযোগ বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোর দিকেও ঘুরে যেতে পারে বলে মন্তব্য করে তিনি। তার মতে, পুতিনের সম্ভবত একটাই লক্ষ্য, জার হিসেবে তার নেতৃত্বে সোভিয়েত ইউনিয়ন বা সম্ভবত রাশিয়ান সাম্রাজ্যের যতটা সম্ভব পুনরায় একত্রিত করা।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর হামলার পর পেরিয়ে গেছে দুই বছর। এখন পর্যন্ত এই হামলা বন্ধের কোনো আভাস পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে যুদ্ধের ভবিষ্যৎ কোন দিকে গড়াচ্ছে, সে বিষয়েও সঠিক কোনো পূর্বাভাস দেওয়া যাচ্ছে না।
রাশিয়ার ৫০০ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
ইউক্রেনে হামলার দুই বছরে এসে রাশিয়ার ৫০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আজ শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন বলে জানায় এএফপি। মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট বলছে, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসনের পর থেকে গত দুই বছরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে এটাই সবচেয়ে বড় নিষেধাজ্ঞা। সপ্তাহখানেক আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক অ্যালেক্সি নাভালনির কারাগারে মৃত্যুর ঘটনাও এ নিষেধাজ্ঞায় প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় কারা আসছে দিনের শেষে তাদের নাম প্রকাশ হবে বলে জানিয়েছেন বাইডেন। তিনি বলেন, 'নাভালনির কারাবাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং রাশিয়ার আর্থিক, প্রতিরক্ষা শিল্প, ক্রয়সংক্রান্ত এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে।' এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেন, 'অন্য দেশের ওপর আগ্রাসন এবং দেশের ভেতর দমন-পীড়নের জন্য পুতিনকে যেন অনেক মূল্য দিতে হয়, তা নিশ্চিত করা হবে।' 'রাশিয়ার যুদ্ধ-সরঞ্জামের পেছনে সহায়তাকারী এমন ১০০ প্রতিষ্ঠানের ওপর নতুন করে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে', বলেন তিনি। ইউক্রেনে আগ্রাসনের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে বেশ কয়েক ধাপে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ছিল আর্থিক সম্পদ আটকে দেওয়া, উন্নত প্রযুক্তি সংক্রান্ত রপ্তানি সীমিত করা এবং রাশিয়ান তেলের সর্বোচ্চ বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া।
ইউক্রেনে হামলার দুই বছরে এসে রাশিয়ার ৫০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
হাওয়াই মিঠাইয়ে ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান, তামিলনাড়ুতে নিষিদ্ধ
মুখে দিলেই গলে যায়, স্বাদে চোখ বন্ধ হয়ে আসে- এমনই এক খাবারের নাম হাওয়াই মিঠাই। শৈশবের দিনগুলোকে আরও রঙিন করে তোলা হাওয়াই মিঠাই খেলে কি ক্যানসার হয়? কেননা ভারতের কিছু রাজ্য এমন আশঙ্কা থেকেই মুখরোচক এই খাবারের বিক্রি নিষিদ্ধের চিন্তা করছে। আজ বৃহস্পতিবার বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত সপ্তাহে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ু ল্যাব টেস্টে হাওয়াই মিঠাইয়ের নমুনায় ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান রোডামাইন-বি'র উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর একে নিষিদ্ধ করে। এর আগে, চলতি মাসের শুরুতে হাওয়াই মিঠাই নিষিদ্ধ করে ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুদুচেরি। একইসময়ে অন্য রাজ্যগুলোও হাওয়াই মিঠাইয়ের নমুনা পরীক্ষা শুরু করে। সারা বিশ্বেই শিশুদের কাছে ভীষণ জনপ্রিয় তুলোর মতো মোলায়েম এই খাবারকে ভারতে 'বুড়ি-কা-বাল (বৃদ্ধ নারীর চুল)' নামে ডাকা হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি। হরেক রঙ, মিষ্টি স্বাদের কারণে যেকোনো উৎসব, মেলা ও পার্কে হাওয়াই মিঠাইয়ের ব্যবসা মানেই রমরমা। বিক্রেতাকে ঘিরে ধরে দুরন্ত শিশুর দল, এক টুকরো হাওয়াই মিঠাই মুখে না পুরে নড়েই না। তবে ভারতীয় কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, যতটা মনে করা হয়, হাওয়াই মিঠাই তার চেয়েও বেশি ক্ষতিকর। তামিলনাড়ুর চেন্নাই শহরের খাদ্য নিরাপত্তা কর্মকর্তা পি সতীশ কুমার দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, 'হাওয়াই মিঠাইয়ে থাকা দূষিত উপাদানের কারণে ক্যানসার হতে পারে এবং এটি শরীরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে প্রভাবিত করতে পারে।' তার দল গত সপ্তাহে চেন্নাই শহরের একটি সমুদ্র সৈকতে অভিযান চালায়। সেসময় তারা দেখেন যে, বিক্রেতারা নিজেরাই হাওয়াই মিঠাই বানিয়ে বিক্রি করছেন, নিবন্ধিত কোনো কারখানা থেকে তৈরি হচ্ছে না। এর কয়েকদিন পর হাওয়াই মিঠাইয়ের নমুনা পরীক্ষা করে এতে রোডামাইন-বি নামে রাসায়নিক যৌগের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এরপর হাওয়াই মিঠাই বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে রাজ্য সরকার। হাওয়াই মিঠাইকে ঝলমলে গোলাপি করতে রোডামাইন-বি ব্যবহার করা হয়। এটি মূলত কাপড়, প্রসাধনী এবং কালির রঙ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, রোডামাইন-বি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায় এবং খাবারের রঙ হিসেবে এই রাসায়নিকের ব্যবহারকে ইউরোপ ও ক্যালিফোর্নিয়ায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তামিলনাড়ুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী মা সুব্রামানিয়ান এক বিবৃতিতে বলেন, 'রোডামাইন-বি যুক্ত কোনো খাবারের প্যাকেজিং, আমদানি, বিক্রি কিংবা রোডামাইন-বি যুক্ত খাবার বিয়ে অথবা অন্যান্য অনুষ্ঠানে সরবরাহ করা ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অ্যাক্ট, ২০০৬ এর আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে।' তামিলনাড়ুর পর প্রতিবেশী রাজ্য অন্ধ্র প্রদেশও হাওয়াই মিঠাইয়ের নমুনা পরীক্ষা শুরু করেছে বলে জানা গেছে। এই সপ্তাহের শুরুর দিকে নিউ ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, দিল্লির খাদ্য নিরাপত্তা কর্মকর্তারাও হাওয়াই মিঠাই নিষিদ্ধের ওপর জোর দিচ্ছেন।
মুখে দিলেই গলে যায়, স্বাদে চোখ বন্ধ হয়ে আসে- এমনই এক খাবারের নাম হাওয়াই মিঠাই। শৈশবের দিনগুলোকে আরও রঙিন করে তোলা হাওয়াই মিঠাই খেলে কি ক্যানসার হয়? কেননা ভারতের কিছু রাজ্য এমন আশঙ্কা থেকেই মুখরোচক এই খাবারের বিক্রি নিষিদ্ধের চিন্তা করছে।
মিয়ানমারে ৪ দিনে আরও কয়েকটি সেনা ঘাঁটি বিদ্রোহীদের দখলে
মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী ও জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলো গত চারদিনে দেশটির কয়েকটি অঞ্চলে সেনাবাহিনীর কাছ থেকে আরও কয়েকটি ঘাঁটি দখলে দাবি করেছে। গতকাল বুধবার মিয়ানমারের থাইল্যান্ডভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতী এ তথ্য জানায়। প্রতিবেদনে বলা হয়—এসবের মধ্যে আছে কাচিন, রাখাইন ও মন রাজ্য এবং সাগাইং ও বাগো অঞ্চল। দ্য ইরাবতী এসব অভিযান সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছে উল্লেখ করে প্রতিবেদেন বলা হয়, তবে সেনাদের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। প্রতিবেদন অনুসারে, টানা তিন দিন লড়াইয়ের পর গত সোমবার আরাকান আর্মির সদস্যরা কাচিন রাজ্যে মানদালায়-মিটকিনিয়া সড়কে সেনাবাহিনীর একটি কৌশলগত ঘাঁটি অবরোধ করে। মানসি শহরের সিখাংগি গ্রামে সেই ঘাঁটিতে কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মি ও কাচিন রিজন পিপলস ডিফেন্স ফোর্সও একই সঙ্গে হামলা চালায়। প্রায় ৩০ বছর পুরোনা সেই ঘাঁটিতে সেনাদের দুই পদাতিক বাহিনী অবস্থান করছিল। সশস্ত্র সংগঠনগুলোর বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানায়—ঘাঁটিটি রক্ষায় সেনারা ৬০ বারের বেশি বিমান হামলা চালায়। সেই হামলায় ছয় বেসামরিক ব্যক্তি নিহত ও আরও ১৫ জন আহত হন। মিয়ানমারের বাগো অঞ্চলে সেনাবিরোধী সশস্ত্র সংগঠন রেড স্কার্ফ কলাম। ছবি: রেড স্কার্ফ কলাম/ দ্য ইরাবতী এ ছাড়াও, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরে আরাকান আর্মির হাতে আরেকটি সেনাঘাঁটির পতন হয়েছে বলে বিদ্রোহীদের বরাত দিয়ে সংবাদ প্রতিবেদনে জানানো হয়। এতে আরও বলা হয়, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় আরাকান আর্মির সদস্যরা মংডু শহরের ডি ইয়ুন তাউং গ্রামে সেনাঘাঁটিটিতে হামলা চালায়। তারা ঘাঁটিটি প্রায় ৯ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। সংঘর্ষের সময় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গ্রামটির আশেপাশে তিনবার বিমান হামলা চালায়। আরাকার আর্মি সংবাদমাধ্যমটিকে জানায়, তারা বিপুল সংখক গোলাবারুদ দখলে নিয়েছে। সেখানে ১০ সেনার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। আশেপাশের জঙ্গলে পালিয়ে যাওয়া সেনাদের খোঁজা হচ্ছে। ইয়াংওন পিপলস ডিফেন্স ফোর্স ব্যাটেলিয়নের সামরিক প্রশিক্ষণ। ছবি: ইয়াংওন মিলিটারি কমান্ড/ দ্য ইরাবতী সিত্তে, পোনাকিউন, রাথেডং, রামরি, কিয়াউকফিউ ও আন শহরে বেসামরিক এলাকায় সেনাবাহিনী কামান ও বিমান হামলা চালাচ্ছে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়াও, ইয়ে গেরিলা ফোর্সের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সোমবার মন রাজ্যের ইয়ে শহরে মিলিটারি অপারেশন কমান্ড সেন্টারে গেরিলা ফোর্সের সদস্যরা ড্রোন হামলা চালিয়েছে। একই দিনে মিয়ানমারের ভারত সীমান্তবর্তী উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় সাগাইং অঞ্চলে সেনাঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। এর আগে গত শনিবার মিয়ানমারের থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী দক্ষিণে বাগো অঞ্চলে সেনাদের ওপর হামলা চালায় সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। এ ছাড়াও, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরে আরাকান আর্মির হাতে আরেকটি সেনাঘাঁটির পতন হয়েছে বলে বিদ্রোহীদের বরাত দিয়ে সংবাদ প্রতিবেদনে জানানো হয়। এতে আরও বলা হয়, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় আরাকান আর্মির সদস্যরা মংডু শহরের ডি ইয়ুন তাউং গ্রামে সেনাঘাঁটিটিতে হামলা চালায়। তারা ঘাঁটিটি প্রায় ৯ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। সংঘর্ষের সময় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গ্রামটির আশেপাশে তিনবার বিমান হামলা চালায়। আরাকার আর্মি সংবাদমাধ্যমটিকে জানায়, তারা বিপুল সংখক গোলাবারুদ দখলে নিয়েছে। সেখানে ১০ সেনার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। আশেপাশের জঙ্গলে পালিয়ে যাওয়া সেনাদের খোঁজা হচ্ছে। ইয়াংওন পিপলস ডিফেন্স ফোর্স ব্যাটেলিয়নের সামরিক প্রশিক্ষণ। ছবি: ইয়াংওন মিলিটারি কমান্ড/ দ্য ইরাবতী সিত্তে, পোনাকিউন, রাথেডং, রামরি, কিয়াউকফিউ ও আন শহরে বেসামরিক এলাকায় সেনাবাহিনী কামান ও বিমান হামলা চালাচ্ছে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়াও, ইয়ে গেরিলা ফোর্সের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সোমবার মন রাজ্যের ইয়ে শহরে মিলিটারি অপারেশন কমান্ড সেন্টারে গেরিলা ফোর্সের সদস্যরা ড্রোন হামলা চালিয়েছে। একই দিনে মিয়ানমারের ভারত সীমান্তবর্তী উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় সাগাইং অঞ্চলে সেনাঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। এর আগে গত শনিবার মিয়ানমারের থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী দক্ষিণে বাগো অঞ্চলে সেনাদের ওপর হামলা চালায় সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। সিত্তে, পোনাকিউন, রাথেডং, রামরি, কিয়াউকফিউ ও আন শহরে বেসামরিক এলাকায় সেনাবাহিনী কামান ও বিমান হামলা চালাচ্ছে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়াও, ইয়ে গেরিলা ফোর্সের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সোমবার মন রাজ্যের ইয়ে শহরে মিলিটারি অপারেশন কমান্ড সেন্টারে গেরিলা ফোর্সের সদস্যরা ড্রোন হামলা চালিয়েছে। একই দিনে মিয়ানমারের ভারত সীমান্তবর্তী উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় সাগাইং অঞ্চলে সেনাঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। এর আগে গত শনিবার মিয়ানমারের থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী দক্ষিণে বাগো অঞ্চলে সেনাদের ওপর হামলা চালায় সশস্ত্র বিদ্রোহীরা।
মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী ও জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলো গত চারদিনে দেশটির কয়েকটি অঞ্চলে সেনাবাহিনীর কাছ থেকে আরও কয়েকটি ঘাঁটি দখলে দাবি করেছে।
পুতিনের গাড়ির প্রশংসা করে এবার উপহার পেয়ে গেলেন কিম
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিষয়টি অজানা নয়। এবার জানা গেল, কিমকে রাশিয়ার তৈরি একটি গাড়ি উপহার দিয়েছেন পুতিন। তবে গাড়িটি কোন মডেলের তা জানা যায়নি। উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ'র বরাত দিয়ে রুশ সংবাদ সংস্থা তাস জানায়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি পাঠানো গাড়িটি কিমের বোন কিম ইয়ো জং ও দেশটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পাক জং চোন গ্রহণ করেন। এটিকে 'সেরা উপহার' হিসেবে বর্ণনা করে কিমের বোন বলেন, 'এটি দুই দেশের নেতার বিশেষ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের স্পষ্ট প্রমাণ।' এজন্য তিনি পুতিনের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জ্ঞাপন করেন। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সেপ্টেম্বরে রাশিয়া সফরকালে পুতিনের ব্যবহৃত অরাস সেনাট লিমুজিন গাড়ির প্রশংসা করেছিলেন কিম। সেসময় কিমকে গাড়ির পেছনে বসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন পুতিন। উত্তর কোরিয়ায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা থাকায় পুতিনের উপহারটিকে এই নিষেধাজ্ঞার লঙ্ঘন বলে মনে করা হচ্ছে। কিমের বিলাসবহুল বিদেশি গাড়ির সংগ্রহ রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, মার্সিডিজ-মেব্যাচ এস৬০০, রোলস-রয়েস ফ্যান্টম এবং লেক্সাস এলএক্স ৫৭০। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কিম কীভাবে বিলাসবহুল বিদেশি গাড়ি ব্যবহার করেন, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ধারণা করা হয়, কিমের সংগ্রহে থাকা গাড়িগুলো বেশিরভাগই বিদেশ থেকে পাচার করা।
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিষয়টি অজানা নয়। এবার জানা গেল, কিমকে রাশিয়ার তৈরি একটি গাড়ি উপহার দিয়েছেন পুতিন।
কারাগারে পুতিন সমালোচক নাভালনির মৃত্যু
রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমালোচক অ্যালেক্সি নাভালনি কারাবন্দী অবস্থায় মারা গেছেন। রাশিয়ার কারা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে আজ শুক্রবার বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, আর্কটিক সার্কেলের উত্তরে পেনাল কলোনিতে কারাবাসে ছিলেন নাভালনি। শুক্রবার সেখানেই তিনি পড়ে যান এবং জ্ঞান হারান। কারাগারের চিকিৎসকরা সেখানে এসে তাকে দেখেন এবং পরে অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হয়। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সের চিকিৎসকরা নাভালনিকে মৃত ঘোষণা করেন বলে কারা কর্তৃপক্ষ জানায়। তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অবশ্য জানাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। পুতিনকে নাভালনির মৃত্যুর বিষয়ে জানানো হয়েছে বলে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান। আইনজীবী ও দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনকারী আলেক্সি নাভালনি গত এক দশক ধরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মদদপুষ্ট ব্যবসায়ীদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ছিলেন সোচ্চার কণ্ঠ। ক্রেমলিনবিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশ করার জন্য তিনি বেশ কয়েকবার কারাবরণ করেন। ২০২১ সাল থেকে কারাবন্দী নাভালনিকে গত বছর সাইবেরিয়ার কারাগারে স্থানান্তর করে রুশ কর্তৃপক্ষ।
রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমালোচক অ্যালেক্সি নাভালনি কারাবন্দী অবস্থায় মারা গেছেন।
‘দিল্লি চলো’ কৃষক রোডমার্চে আবারও টিয়ার শেল
'বিরতি' শেষে আবারও 'দিল্লি চলো' রোডমার্চ শুরু করতে গেলে কৃষকদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী। আজ বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টার দিকে পাঞ্জাব ও হরিয়ানার মধ্যবর্তী শম্ভু সীমান্তে টিয়ার শেল ছোড়া হয় বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। আন্দোলনকারীদের বরাত দিয়ে এতে বলা হয়েছে, কৃষকরা সকালে 'দিল্লি চলো' রোডমার্চ পুনরায় শুরু করতে গেলে তাদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আন্দোলনকারীরা জানান, তারা শম্ভু সীমান্তে পুলিশের ব্যারিকেডের কাছে জড়ো হলে তাদের লক্ষ্য করে টিয়ার শেল নিক্ষেপ করা হয়। গতকাল থেকে কৃষকরা পুনরায় আন্দোলন শুরু করার পর কেন্দ্র থেকে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে, ফসলের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (এমএসপি) গ্যারান্টি দেওয়ার আইন প্রণয়নের যে মূল দাবি তারা জানিয়েছে, সেটার বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আজ কৃষকদের আবারও আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছে। কৃষকদের আন্দোলন ঘিরে দিল্লি সীমান্তের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। দিল্লি থেকে ২০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে শম্ভু সীমান্তে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, কৃষকদের কর্মসূচি বানচাল করতে গতকাল টিয়ার শেল ও জলকামান ব্যবহার করেছে পুলিশ। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল রাতে কৃষকরা তাদের কর্মসূচিতে 'সাময়িক বিরতি' ঘোষণা করে বুধবার সকাল থেকে পুনরায় তা শুরু করার কথা জানায়। ধারণা করা হচ্ছে, আজ কৃষকরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সামনে এগিয়ে যেতে পারে। এদিকে কৃষকদের আন্দোলন ঘিরে দিল্লি-গাজিয়াবাদ সীমান্তে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে বলে দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। আন্দোলন রুখতে দিল্লি সীমান্তে নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। হরিয়ানার ডিএসপি অনিল কুমার এএনআইকে বলেছেন, যানজট নিয়ন্ত্রণে রুট ডাইভার্ট করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। উল্লেখ্য, বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে ২০২০ সাল থেকে বিক্ষোভ করে আসছেন ভারতের কৃষকরা।
'বিরতি' শেষে আবারও 'দিল্লি চলো' রোডমার্চ শুরু করতে গেলে কৃষকদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী।
ভারতে কৃষকদের রোডমার্চে ড্রোন থেকে টিয়ারশেল নিক্ষেপ
ভারতের পাঞ্জাব ও হরিয়ানার মধ্যবর্তী শম্ভু সীমান্তে কৃষকদের 'দিল্লি চলো' রোডমার্চে ড্রোনের সাহায্যে কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, একাধিক ভিডিওতে ঘটনাস্থল কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যেতে দেখা গেছে। কাঁদানে গ্যাসের তীব্রতা থেকে বাঁচতে শত শত কৃষক ও মিডিয়া কর্মীদের দিগ্বিদিক ছুটোছুটি করতেও দেখা গেছে। এনডিটিভি বলছে, কৃষকরা শান্তিপূর্ণভাবে রোডমার্চ শুরু করেছিলেন। কৃষকদের দিক থেকে কোনো ধরনের উস্কানি না থাকলেও দুপুরের দিকে তাদের লক্ষ্য করে অন্তত দুই ডজন কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়েছে পুলিশ। দিল্লি থেকে ২০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে শম্ভু সীমান্তে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। কৃষকদের জমায়েত স্থল লক্ষ্য করে সেখানে ড্রোন থেকে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ। ভিডিওতে আরও দেখা গেছে, বিক্ষুব্ধ কৃষকরা মুখে কাপড় বেধে ব্যারিকেড ডিঙানোর চেষ্টা করছেন। কোনো কোনো জায়গায় তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়ছেন। কৃষক-পুলিশের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থল বর্তমানে যুদ্ধক্ষেত্রে রূপ নিয়েছে। কমপক্ষে ২০০ কৃষক ইউনিয়নের নেতৃত্বে হরিয়ানা, পাঞ্জাব এবং উত্তর প্রদেশের আনুমানিক এক লাখ কৃষক আজ সকালে দিল্লি অভিমুখে রোডমার্চ শুরু করে। ফসলের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (এমএসপি) গ্যারান্টি দেওয়ার আইন, কৃষকদের জন্য পেনশন, শস্যবিমা এবং তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর বাতিলের দাবিতে হাজার হাজার কৃষক রাস্তায় নেমেছেন।
ভারতের পাঞ্জাব ও হরিয়ানার মধ্যবর্তী শম্ভু সীমান্তে কৃষকদের 'দিল্লি চলো' রোডমার্চে ড্রোনের সাহায্যে কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ।
রাফাহ এলাকায় ইসরায়েলের অভিযান ‘যত দ্রুত সম্ভব’ বন্ধের আহ্বান চীনের
গাজার রাফাহ এলাকায় সামরিক অভিযান 'যত দ্রুত সম্ভব' বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীন। যুদ্ধ বন্ধ না হলে সেখানে 'গুরুতর মানবিক বিপর্যয়' ঘটবে বলেও সতর্ক করেছে দেশটি। আজ মঙ্গলবার এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'রাফাহ এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে চীন। সেখানে নাগরিকদের ক্ষয়ক্ষতি এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের যেকোনো কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা ও নিন্দা করে চীন।' তিনি আরও বলেন, 'রাফাহ এলাকায় আরও গুরুতর মানবিক বিপর্যয় রোধ করতে এবং বেসামরিক হতাহতের ঘটনা এড়াতে ইসরায়েলকে তার সামরিক অভিযান "যত দ্রুত সম্ভব" বন্ধ করতে হবে।' ইতোমধ্যে গাজার অন্যান্য এলাকা ছেড়ে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি রাফাহ এলাকায় এসে আশ্রয় নিয়েছেন। এর আগে, রাফাহ এলাকাকে হামলার আওতায় রাখা হবে জানালেও এবার সেখানে অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। তবে বেসামরিক অধ্যুষিত রাফাহ এলাকায় যেন অভিযান চালানো না হয় সে বিষয়ে ইসরায়েলের প্রতি আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে।
গাজার রাফাহ এলাকায় সামরিক অভিযান 'যত দ্রুত সম্ভব' বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীন।
১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে ভারতে কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ রোডমার্চ
রাজ্যের সীমান্ত বন্ধ, জায়গায় জায়গায় ব্যারিকেড, দিল্লিতে ১৪৪ ধারা জারি সত্ত্বেও পাঞ্জাব ও হরিয়ানার মধ্যবর্তী শম্ভু সীমান্ত থকে পূর্বঘোষিত 'দিল্লি চলো' রোডমার্চ শুরু করেছেন ভারতের কৃষকরা। ফসলের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (এমএসপি) গ্যারান্টি দেওয়ার আইন, কৃষকদের জন্য পেনশন, শস্যবিমা এবং তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর বাতিলের দাবিতে হাজার হাজার কৃষক রাস্তায় নেমেছেন। টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, চলতি বছরের মে-এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া লোকসভা নির্বাচনের আগে কৃষকদের নতুন করে আন্দোলন নরেন্দ্র মোদি সরকারকে বেশ চ্যালেঞ্জে ফেলে দেবে। কৃষকদের এই রোডমার্চ ঠেকাতে ইতোমধ্যে রাজধানী দিল্লিকে নিরাপত্তা চাঁদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। দিল্লিতে এক মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে পুলিশ। কৃষকরা যাতে ট্রাক্টর, ট্রাক ও ট্রলি নিয়ে সড়কে নামতে না পারে সেজন্য জায়গায় জায়গায় বসানো হয়েছে ব্যারিকেড। নিষিদ্ধ করা হয়েছে যেকোনো জমায়েত ও সমাবেশ। পুলিশ জানায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সিএপিএফ, ক্রাইম ব্রাঞ্চ ও ব্যাটালিয়নসহ দুই হাজারেরও বেশি সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে। তারা যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা মোকাবিলা করবে এবং সার্বক্ষণিক নজরদারি বজায় রাখবে। উল্লেখ্য, বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে ২০২০ সাল থেকে বিক্ষোভ করে আসছেন ভারতের কৃষকরা।
রাজ্যের সীমান্ত বন্ধ, জায়গায় জায়গায় ব্যারিকেড, দিল্লিতে ১৪৪ ধারা জারি সত্ত্বেও পাঞ্জাব ও হরিয়ানার মধ্যবর্তী শম্ভু সীমান্ত থকে পূর্বঘোষিত 'দিল্লি চলো' রোডমার্চ শুরু করেছেন ভারতের কৃষকরা।
পাকিস্তানের ‘ভোট বিপ্লবে’ ইমরানের সাফল্যের যত কারণ
পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে ঘোষিত ২৬৪ আসনের ফলাফলে সবচেয়ে বেশি ১০১টি আসন পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এই প্রার্থীদের ৯৩ জনই কারান্তরীণ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত। বিশ্লেষকদের ভাষ্য, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও পাকিস্তানের রাজনীতিতে পিটিআইয়ের শক্ত অবস্থান ইতোমধ্যে তৈরি হয়ে গেছে, যা পাকিস্তানের রাজনীতিকে একটি নতুন মেরুকরণের সামনে দাঁড় করিয়েছে। অথচ এই নির্বাচন ঘিরে ইমরান খানের সামনে প্রতিবন্ধকতার শেষ ছিল না। পিটিআইয়ের ক্ষমতা খর্ব করতে সেনাবাহিনী তাদের প্রতিটি অস্ত্র ব্যবহার করেছে। পিটিআইয়ের দলীয় প্রতীক ক্রিকেট ব্যাট বাতিল করা হয়েছে। কারাবন্দী করা হয়েছে দলের অন্য অনেক নেতাকেও। আর মূলধারার গণমাধ্যমেও পিটিআইয়ের জায়গা ছিল না। নেতাদের ওপর ছিল আনুগত্য পরিবর্তন কিংবা রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার প্রবল চাপ। সবমিলিয়ে আক্ষরিক অর্থেই পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে পিটিআইকে মুছে ফেলার সব চেষ্টাই করা হয়েছে নির্বাচনের পুরো সময়জুড়ে। তা সত্ত্বেও নির্বাচনে ইমরান খান ও পিটিআইয়ের অভাবনীয় সাফল্যের কারণগুলো ঠিক কী কী—তা নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার কথা বলেছে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সাহাব এনাম খানের সঙ্গে। এ বিষয়ে এম হুমায়ুন কবির বলেন, 'আমরা জানি যে ইমরান খানের দল যাতে নির্বাচনে ভালো ফল করতে না পারে তার জন্য সামরিক বাহিনী যথেষ্ট পরিমাণ চাপে রেখেছিল তাদের। এমনকি দলটির নির্বাচনী প্রতীকও ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল।' 'তারপরেও নির্বাচনে পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীদের সাফল্যের কারণ, পাকিস্তানের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো কিন্তু এখনো কম-বেশি কার্যকর আছে। সে কারণেই নির্বাচন কমিশন সময়ে সময়ে ফলাফল ঘোষণা স্থগিত রাখলেও আমার ধারণা চাপ দিয়েও তাদের কাজ করানো যায়নি। এর বাইরে দেশটির বিচার বিভাগ নিজস্ব অবস্থান ধরে রেখে অন্তত গত দুই দশকে বিভিন্ন ভালো উদাহরণ তৈরি করেছে।' সাবেক এই রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, 'এই নির্বাচন কোনো দলীয় সরকারের অধীনে হয়নি। ফলে সামরিক বাহিনীসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো চাপ দিয়ে সবটা দখল করার সুযোগ পেয়েছে বলে মনে হয় না। সে কারণেই পাকিস্তানের জনগণ একটি বিশেষ সংস্থার অনুগ্রহ পেয়ে আসা নওয়াজ শরীফকে প্রত্যাখ্যান করেছে বলে মনে হয়। অনেকটা একই ঘটনা ঘটেছে পাকিস্তান পিপলস পার্টির ক্ষেত্রেও।' এই নির্বাচন নিয়ে সাবেক এই রাষ্ট্রদূতের পর্যবেক্ষণ হলো, 'পাকিস্তানে আরেকটা সত্তরের মোমেন্ট তৈরি হয়েছে। ওই নির্বাচনে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী যা প্রত্যাশা করেছিল তার ফল হয়েছিল ভিন্নরকম। এবারও সেই একইরকম হচ্ছে। কাজেই এটা খুব ভাগ্য নির্ধারণী মুহূর্ত পাকিস্তানের রাজনীতির জন্য। এটাকে যদি তারা সঠিকভাবে উত্তরণের দিকে নিয়ে যায় তাহলে তা দেশটির জন্য ইতিবাচক হবে।' আরওপিটিআইকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানাবেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট: দাবি পিটিআই চেয়ারম্যানের অধ্যাপক সাহাব এনাম খানও মনে করেন, পাকিস্তানের নির্বাচনী ইতিহাসে এটা একটি নতুন মুহূর্ত। তার মতে, পাকিস্তানে যে নির্বাচনটা হয়ে গেল, তা ছিল জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত নির্বাচন। এটা কোনো রাজনৈতিক দলের নির্বাচন ছিল না। সাহাব এনাম বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন এভাবে—'জনগণ এখানে দুটো বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েছে। পাকিস্তানে সামরিক রাজনীতির বিরুদ্ধে যে অনাস্থা, সেটার একটা প্রায়োগিক প্রতিফলন ঘটেছে এই নির্বাচনের ভেতর দিয়ে। দ্বিতীয়ত, ইমরান খানের যে ক্যারিশমেটিক লিডারশিপ আছে বিরোধী দল হিসেবে কিংবা সরকারি দল হিসেবে- ওই ক্যারিশমেটিক রোলটা পাকিস্তানের সমাজ অ্যাপ্রিসিয়েট করে। তাই বলা যায় এই নির্বাচনের ভেতর দিয়ে পাকিস্তানের সমাজে, পাকিস্তানের রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিস্তর পরিবর্তন এসেছে।' এই অধ্যাপক মনে করেন, এই পরিবর্তনের মূল কারণটা হলো অর্থনীতি। তিনি বলেন, 'এই অর্থনীতির জায়গা থেকে তারা (পাকিস্তানের জনগণ) গুরুত্ব দিয়েছে ক্যারিশমেটিক লিডারশিপ কার কাছে আছে তার ওপর। এটা বিলওয়াল হতে পারত। কিন্তু তার তো সেই ক্যারিশমা নেই।' আরওপাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন: জয়ী দলকে যেসব সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে 'রাজনীতিতে আসার পর থেকে ইমরানের সামনে সবসময় সুনির্দিষ্ট একটা লক্ষ্য ছিল। সেটা হলো সামরিকতন্ত্র থেকে দেশের অর্থনীতিকে বের করে নিয়ে আসা এবং অর্থনৈতিক গতিশীলতার ক্ষেত্রে পাশ্চাত্য নির্ভরতা কমানো। সেইসঙ্গে আরেকটা বিষয় এসেছে। সেটা হলো ইমরান খান নিজে অভিজাত শ্রেণীর প্রতিনিধি হয়েও সাধারণের কাতারে নিজেকে নামিয়ে আনতে পেরেছেন। যেটা নওয়াজ শরীফ কিংবা বিলওয়াল ভুট্টোর পক্ষে সম্ভব হয়নি। এছাড়া পাকিস্তানের তরুণ প্রজন্ম অনেক বেশি প্রগতিশীল এবং বাস্তববাদী। তাদের সমর্থন ইমরান পেয়েছেন।' পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী কিংবা 'এলিটিস্টরা' বিভিন্ন প্রলোভনের মাধ্যমে ইমরান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সরিয়ে আনার চেষ্টা করলেও তা আদতে কার্যকর হয়নি মন্তব্য করে অধ্যাপক সাহাব এনাম বলেন, 'নির্বাচনের এই ফলাফল একটা দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব রাখবে পাকিস্তানের রাজনীতি। তবে (পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির মতো) প্রথাগত রাজনৈতিক দলগুলোর চিন্তাধারায় পরিবর্তন আসতে অনেক সময় লাগবে। কারণ মিলিটারি এলিটিজম থেকে বেরিয়ে আসার মতো সক্ষমতা তাদের এখনো তৈরি হয়নি।' আরওকোয়ালিশন ছাড়াই সরকার গঠনের আশা ইমরানের দল পিটিআইয়ের আরওনির্বাচন নিয়ে যা বললেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির আরওপাকিস্তানে চলছে ভোট, কোণঠাসা ইমরান খানের পিটিআই অধ্যাপক সাহাব এনাম খানও মনে করেন, পাকিস্তানের নির্বাচনী ইতিহাসে এটা একটি নতুন মুহূর্ত। তার মতে, পাকিস্তানে যে নির্বাচনটা হয়ে গেল, তা ছিল জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত নির্বাচন। এটা কোনো রাজনৈতিক দলের নির্বাচন ছিল না। সাহাব এনাম বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন এভাবে—'জনগণ এখানে দুটো বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েছে। পাকিস্তানে সামরিক রাজনীতির বিরুদ্ধে যে অনাস্থা, সেটার একটা প্রায়োগিক প্রতিফলন ঘটেছে এই নির্বাচনের ভেতর দিয়ে। দ্বিতীয়ত, ইমরান খানের যে ক্যারিশমেটিক লিডারশিপ আছে বিরোধী দল হিসেবে কিংবা সরকারি দল হিসেবে- ওই ক্যারিশমেটিক রোলটা পাকিস্তানের সমাজ অ্যাপ্রিসিয়েট করে। তাই বলা যায় এই নির্বাচনের ভেতর দিয়ে পাকিস্তানের সমাজে, পাকিস্তানের রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিস্তর পরিবর্তন এসেছে।' এই অধ্যাপক মনে করেন, এই পরিবর্তনের মূল কারণটা হলো অর্থনীতি। তিনি বলেন, 'এই অর্থনীতির জায়গা থেকে তারা (পাকিস্তানের জনগণ) গুরুত্ব দিয়েছে ক্যারিশমেটিক লিডারশিপ কার কাছে আছে তার ওপর। এটা বিলওয়াল হতে পারত। কিন্তু তার তো সেই ক্যারিশমা নেই।' 'রাজনীতিতে আসার পর থেকে ইমরানের সামনে সবসময় সুনির্দিষ্ট একটা লক্ষ্য ছিল। সেটা হলো সামরিকতন্ত্র থেকে দেশের অর্থনীতিকে বের করে নিয়ে আসা এবং অর্থনৈতিক গতিশীলতার ক্ষেত্রে পাশ্চাত্য নির্ভরতা কমানো। সেইসঙ্গে আরেকটা বিষয় এসেছে। সেটা হলো ইমরান খান নিজে অভিজাত শ্রেণীর প্রতিনিধি হয়েও সাধারণের কাতারে নিজেকে নামিয়ে আনতে পেরেছেন। যেটা নওয়াজ শরীফ কিংবা বিলওয়াল ভুট্টোর পক্ষে সম্ভব হয়নি। এছাড়া পাকিস্তানের তরুণ প্রজন্ম অনেক বেশি প্রগতিশীল এবং বাস্তববাদী। তাদের সমর্থন ইমরান পেয়েছেন।' পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী কিংবা 'এলিটিস্টরা' বিভিন্ন প্রলোভনের মাধ্যমে ইমরান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সরিয়ে আনার চেষ্টা করলেও তা আদতে কার্যকর হয়নি মন্তব্য করে অধ্যাপক সাহাব এনাম বলেন, 'নির্বাচনের এই ফলাফল একটা দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব রাখবে পাকিস্তানের রাজনীতি। তবে (পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির মতো) প্রথাগত রাজনৈতিক দলগুলোর চিন্তাধারায় পরিবর্তন আসতে অনেক সময় লাগবে। কারণ মিলিটারি এলিটিজম থেকে বেরিয়ে আসার মতো সক্ষমতা তাদের এখনো তৈরি হয়নি।'
পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে ঘোষিত ২৬৪ আসনের ফলাফলে সবচেয়ে বেশি ১০১টি আসন পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এই প্রার্থীদের ৯৩ জনই কারান্তরীণ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত।
সরকার গঠনে জোট করবে পিএমএল-এন ও পিপিপি, বিক্ষোভের ডাক পিটিআইয়ের
জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ৬০ ঘণ্টারও বেশি সময় পর পূর্ণাঙ্গ ফলাফল ঘোষণা করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। ২৬৪ আসনের ঘোষিত ফলাফলে স্বতন্ত্ররা ১০১টিতে জয় নিয়ে এগিয়ে আছেন। যাদের প্রায় সবাই ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত। ডন বলছে, ৭৫ ও ৫৪ আসন নিয়ে নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও বিলওয়াল ভুট্টোর দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) নির্বাচনে পিছিয়ে থাকলেও জোট বেঁধে সরকার গঠনের দৌড়ে এগিয়ে আছে। ক্ষমতা ভাগাভাগির আলোচনায় এখন পর্যন্ত নেই কারাবন্দি ইমরানের দল পিটিআই। তারা ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। ইতোমধ্যে পাঞ্জাবের চকওয়ালের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করায় পিটিআই সমর্থিত দুই প্রার্থী ও তাদের ৩০০ সমর্থকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় সন্ত্রাস ও লাউড স্পিকার নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনসহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে জিও নিউজ। দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরুর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে পাঞ্জাব পুলিশ মহাপরিদর্শকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমনের অভিযোগ তুলেছে পিটিআই। দলটি বলেছে, 'প্রথমে তারা জনগণের ম্যান্ডেট চুরি করার চেষ্টা করেছে, এখন তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হাইজ্যাক করার চেষ্টা করছে। পাঞ্জাবের পুলিশ প্রধান মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন এবং আবারও একই ধরনের কৌশল অবলম্বনের চেষ্টা করছেন।' এদিকে, সমগ্র পাঞ্জাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিত করেছে পিটিআই। দলটির নেতা হাম্মাদ আজহার জানান, আজ কেবল রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের বাইরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হবে। এক্সে এক পোস্টে তিনি বলেন, 'সমগ্র পাঞ্জাব থেকে সন্দেহজনক বার্তা আসছে।' সমর্থকদের ভাঙচুর কিংবা অগ্নিসংযোগ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ৬০ ঘণ্টারও বেশি সময় পর পূর্ণাঙ্গ ফলাফল ঘোষণা করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। ২৬৪ আসনের ঘোষিত ফলাফলে স্বতন্ত্ররা ১০১টিতে জয় নিয়ে এগিয়ে আছেন। যাদের প্রায় সবাই ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত।
এককভাবে বেশি আসনে বিজয়ী হয়েও কারাগারেই থাকবেন ইমরান?
অনিশ্চয়তাতেই থাকছে পাকিস্তানের রাজনীতি। দেশটির জাতীয় পরিষদের নির্বাচনের তিন দিন পরও এর চূড়ান্ত ফল জানা যায়নি। প্রথমে মনে হচ্ছিল কারাবন্দি ইমরান খানই হয়ত সরকার গঠনে সমর্থ হবেন। দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে না দেওয়া ইমরানের সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছেন। তবুও কি তিনি কারাগারেই থেকে যাবেন? সবশেষ পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে সময় যেন ইমরানবিরোধীদেরই অনুকূলে। দেশটির গণমাধ্যম সূত্রে এখন পর্যন্ত যে ফলাফল পাওয়া গেছে তাতে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। জোট গঠনের পথে হাঁটতে হচ্ছে সবাইকেই। পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের ৩৩৬ আসনের মধ্যে সরাসরি নির্বাচন হয় ২৬৬ আসনে। বাকি ৭০টির মধ্যে নারীদের জন্য সংরক্ষিত ৬০ ও সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত ১০ আসন। তিন প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হয়েছিল ২৬৩ আসনে। আজ রোববার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টায় পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডন'র প্রতিবেদনে দেখা যায়—২৬৩ আসনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৫৬ আসনের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। প্রাথমিক ফলাফলে ইমরান খানের পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন ৯৩ আসন, নওয়াজ শরিফের মুসলিম লিগ (পিএলএম-এন) পেয়েছে ৭৩ ও বিলওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫৪টি আসন। দেশটির সরকার গঠনে প্রয়োজন অন্তত ১৩৪ আসন। এমন পরিস্থিতিতে এক সময়ের বৈরী পিএলএম-এন ও পিপিপি মিলে সরকার গঠন করার সম্ভাবনার কথাই বেশি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ডন'র হিসাবে এখন এই দুই দলের আসন ১২৭টি। সেই জাদুকরী সংখ্যা থেকে তারা সামান্য পিছিয়ে। আজ পাকিস্তানের স্থানীয় সময় ভোররাত ১২টা ১১ মিনিটে পিএলএম-এন'র তথ্যসচিব মরিয়ম আওরঙ্গজেব এক্স বার্তায় জানিয়েছেন—গতকাল পিএলএম-এন সভাপতি শাহবাজ শরিফ ও পিপিপির সহসভাপতি আসিফ জারদারির বৈঠক থেকে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি। দল দুটি আরও আলোচনায় রাজি হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলেও তিনি এক্স বার্তায় জানান। ডন প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পিএলএম-এন ও পিপিপির মধ্যে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পাশাপাশি ১৭টি আসন পাওয়া এমকিউএম-পির সঙ্গেও বৈঠক করেছেন পিএলএম-এন নেতারা। গতকাল পিপিপি নেতা বিলওয়াল বলেছিলেন, পিএলএম-এন'র সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগির বিষয়ে এখনো আলোচনা হয়নি। এ দিকে, আজ সারা পাকিস্তানে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে ইমরানের পিটিআই। হয়ত দলটি বুঝতে পারছে তাদের ক্ষমতায় ফেরার আশা ক্রমশই ক্ষীণ হয়ে আসছে। মরিয়ম আওরঙ্গজেবের এক্স বার্তায় জানা গেছে আজ রোববার আবারও আলোচনায় বসবে পিএলএম-এন। আজই হয়ত জানা যেতে পারে কে হচ্ছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। বিশ্লেষকরা আরও মনে করেন, পাকিস্তানের নির্বাচনে জনগণ ভোট দিলেও মূলত সরকার গড়ে-ভাঙে দেশটির সেনাবাহিনী।
অনিশ্চয়তাতেই থাকছে পাকিস্তানের রাজনীতি। দেশটির জাতীয় পরিষদের নির্বাচনের তিন দিন পরও এর চূড়ান্ত ফল জানা যায়নি।
পিটিআইকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানাবেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট: দাবি পিটিআই চেয়ারম্যানের
ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গোহর আলী খান দাবি করেছেন, দেশটির রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি তার দলকেই সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানাবেন। কারণ, তারা জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। তিনি আরও দাবি করেছেন, তার দল ২৬৫টি আসনের মধ্যে ১৭০টিতে জয় পেয়েছে। আজ শনিবার পাকিস্তানের জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোহর খান গণমাধ্যমকে বলেছেন, 'কারো সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই, আমরা এগিয়ে যেতে চাই। আমরা এগিয়ে যাব এবং সংবিধান ও আইন অনুযায়ী সরকার গঠন করব।' তিনি বলেন, 'জনগণ স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।' তিনি আরও বলেন, 'পিটিআইকে কোনো বাধা দেওয়া উচিত নয় এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফলাফল ঘোষণা করা উচিত। আইন অনুযায়ী, চূড়ান্ত ফলাফল ফরম ৪৫ থেকে বের করা হয় এবং আমরা সব ফলাফল পেয়েছি।' চূড়ান্ত ফলাফল আজ রাত ১২টার আগে ঘোষণা করা উচিত বলেও দাবি করেন পিটিআই চেয়ারম্যান। গোহর দাবি করেন, পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তারা দলের প্রতি অনুগত ছিলেন এবং থাকবেন। জিও নিউজে বলা হয়েছে, পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক ক্রিকেটার এবং পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নামে দায়ের করা সব মামলা ভুয়া বলেও দাবি করেছেন গোহর। যেসব নির্বাচনী এলাকায় ফলাফল ঘোষণা বন্ধ রয়েছে সেখানে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করার ঘোষণা দিয়ে পিটিআই চেয়ারম্যান বলেন, 'শ্রমিকদের অনুরোধ করছি, বিক্ষোভ একটি অধিকার, কিন্তু এটি শান্তিপূর্ণ হওয়া উচিত।'
ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গোহর আলী খান দাবি করেছেন, দেশটির রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি তার দলকেই সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানাবেন। কারণ, তারা জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে।
জোট গঠন নিয়ে কারও সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি: বিলওয়াল
পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেছেন জোট গঠনের মাধ্যমে সরকার গড়ার জন্য তার সঙ্গে কোনো দলের আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি। পাকিস্তানের জিও নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল-এন বা ইমরান খানের পিটিআই কারও সঙ্গেই তার আলোচনা হয়নি। তবে জোট গঠন ছাড়া যে তার দল সরকারে যেতে পারবে না সে কথাও স্বীকার করেছেন পাকিস্তানের সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তার বাবা আসিফ আলী জারদারি পিএমএল-এন প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরিফের সঙ্গে কোনো বৈঠক করেছেন কিনা জানতে চাইলে বিলওয়াল বলেন, এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে বলার মতো কোনো তথ্য নেই। সব আসনের ফল ঘোষণা হলেই কেবল আমরা অন্যদের সঙ্গে বসতে পারব। বিলওয়াল এটাও বলেন যে পিটিআই দলের সমর্থক কোনো নির্বাচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী বা কোনো পিপিপি নেতা তার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। তবে পিটিআই দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন এমন কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ হওয়ার কথা স্বীকার করেন তিনি। ২৬৫ আসনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ২৫৫ আসনের প্রাথমিক ফলাফলে ইমরানের দল পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১০০টি আসনে জয় পেয়েছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসনে জয় পেয়েছে নওয়াজ শরিফের নেতৃত্বাধীন পিএমএল-এন। তারা আসন পেয়েছে ৭৩টি। তৃতীয় স্থানে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পিপিপি পেয়েছে ৫৪টি আসন। সরকার গঠনের জন্য এককভাবে বা জোটগতভাবে অন্তত ১৩৪টি আসন থাকতে হবে। আরওপাকিস্তানে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ের বাইরে বিক্ষোভ করবে পিটিআই
পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেছেন জোট গঠনের মাধ্যমে সরকার গড়ার জন্য তার সঙ্গে কোনো দলের আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি।
নির্বাচন নিয়ে যা বললেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির
পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ৪০ ঘণ্টার বেশি সময় আগে শেষ হলেও এখনো ১৫ আসনের ফল ঘোষণা হয়নি। ২৬৫ আসনের মধ্যে ২৫২ আসনের প্রাথমিক ফলাফলে ৯৯ আসনে জয় নিয়ে এগিয়ে আছেন ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্ররা। তবে জোট সরকার গঠনের দিকে যাচ্ছে পিটিআইর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে প্রায় প্রতিটি নির্বাচনেই সেনাবাহিনীর পছন্দের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। ইমরান খানের সামনেও অনেক প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছিল। পিটিআইয়ের ক্ষমতা খর্ব করতে সেনাবাহিনী তাদের প্রতিটি 'অস্ত্র' ব্যবহার করেছে। পিটিআইয়ের দলীয় প্রতীক ক্রিকেট ব্যাট বাতিল করা থেকে শুরু করে ভোটের দিন ইন্টারনেট বন্ধ করাসহ সবকিছুই তারা করেছে। এমন পরিস্থিতিতে আজ শনিবার নির্বাচন নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনির। তিনি বলেন, 'পাকিস্তানের বৈচিত্র্যময় রাজনীতি ও বহুত্ববাদ সব গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যবদ্ধ সরকারের মাধ্যমে জাতীয় স্বার্থে প্রতিফলিত হওয়া উচিত।' আইএসপিআরের মাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে সৈয়দ আসিম মুনির আরও বলেন, 'নির্বাচন জয়-পরাজয়ের শূন্য-সমষ্টি নয় বরং গণরায় নির্ধারণের একটি মহড়া। রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও তাদের কর্মীদের স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে জনগণের শাসন ও সেবা করার প্রচেষ্টাকে একত্রিত করা উচিত, যা গণতন্ত্রকে কার্যকরী ও উদ্দেশ্যমূলক করার একমাত্র উপায় হতে পারে।' তার মতে, 'নির্বাচন ও গণতন্ত্র পাকিস্তানের জনগণের সেবা করার উপায়।' এ ছাড়া, সফল নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য জেনারেল আসিম মুনির পাকিস্তানি জাতি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন (ইসিপি), রাজনৈতিক দল ও বিজয়ী প্রার্থীদের অভিনন্দন জানান। 'ভোটাধিকার প্রয়োগে পাকিস্তানের জনগণের অবাধ ও বাধাহীন অংশগ্রহণ সংবিধানে বর্ণিত গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি তাদের অঙ্গীকারকেই তুলে ধরে,' বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি মনে করেন, 'পাকিস্তানের জনগণ যেহেতু সংবিধানের প্রতি তাদের সম্মিলিত আস্থা রেখেছে, এখন রাজনৈতিক পরিপক্বতা ও ঐক্যের সঙ্গে এর প্রতিদান দেওয়া সব রাজনৈতিক দলের কর্তব্য।'
পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ৪০ ঘণ্টার বেশি সময় আগে শেষ হলেও এখনো ১৫ আসনের ফল ঘোষণা হয়নি। ২৬৫ আসনের মধ্যে ২৫২ আসনের প্রাথমিক ফলাফলে ৯৯ আসনে জয় নিয়ে এগিয়ে আছেন ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্ররা।
এগিয়ে ইমরান সমর্থিত স্বতন্ত্ররা, জোট গড়তে রাজি নওয়াজ-বিলাওয়াল
পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে ২৬৫ আসনের মধ্যে ২৫২ আসনের প্রাথমিক ফলাফলে ৯৯ আসনে জয় নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাদের বেশির ভাগই পিটিআইয়ের সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে লড়েছেন। এরপর নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) জয় পেয়েছে ৭১ আসনে এবং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫৩ আসনে। শনিবার দুপুর ১২টার পর জিও নিউজের লাইভ আপডেটে এ তথ্য জানানো হয়। জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোনো দল এককভাবে সরকার গড়তে প্রয়োজনীয় আসন পাচ্ছে না, এটা প্রায় নিশ্চিত। এ পরিস্থিতিতে জোট সরকার গড়তে ঐকমত্যে পৌঁছেছে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। পিপিপির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি ও তার বাবা পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির সঙ্গে বৈঠক করেছেন পিএমএল-এন-এর প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরিফ। পাঞ্জাবের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান মহসিন নাকভির বাড়িতে এই বৈঠক হয়। বৈঠক সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের বরাতে জিও নিউজ জানায়, বিলাওয়াল ও আসিফ জারদারির সঙ্গে শাহবাজ শরিফের বৈঠকে জোট বেঁধে কেন্দ্রে ও পাঞ্জাবে সরকার গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সূত্র আরও জানায়, ৪৫ মিনিট ধরে চলা বৈঠকে পিপিপির শীর্ষ নেতাদের কাছে নওয়াজ শরিফের বার্তা পৌঁছে দেন শাহবাজ। সেই সঙ্গে তিনি ভবিষ্যতে পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য পিপিপি ও পিএমএল-এন-এর নেতাদের বৈঠকে বসার আহ্বান জানান। এর আগে ২০২২ সালে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পিপিপি ও পিএমএল-এন একসঙ্গে জোট গড়েছিল।
পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে ২৬৫ আসনের মধ্যে ২৫২ আসনের প্রাথমিক ফলাফলে ৯৯ আসনে জয় নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাদের বেশির ভাগই পিটিআইয়ের সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে লড়েছেন।
নওয়াজ-ইমরানের পাল্টাপাল্টি বিজয়ের ভাষণ, সরকার গঠন করবে কারা
পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে বিজয় দাবি করেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান। তার দল পিটিআই দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে না পারলেও এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হয়ে এগিয়ে রয়েছেন পিটিআই–সমর্থিত প্রার্থীরা। অন্যদিকে, আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফও তার দল সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জিততে যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন। পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে ২৬৫ আসনের মধ্যে ২৪৪ আসনের প্রাথমিক ফলাফলে ৯৬ আসনে জয় নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। অন্যদিকে, একক দল হিসেবে সবথেকে বেশি আসন পেয়েছে নওয়াজের দল, পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)। ২৪৪ আসনের প্রাথমিক ফলাফলে দলটি ৭০ আসনে জয় পেয়েছে। যেহেতু ইমরান খানের দল পিটিআই এবার একক দল হিসেবে ভোটে লড়েনি, তাই সমর্থিত প্রার্থীরা এগিয়ে থাকলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে ধরা যাচ্ছে না তাদের। এদিকে, নওয়াজ শরিফ বিজয়ের ঘোষণা করলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার গঠন করতে পারবে না তার দল। তাই জোট গঠনের জন্য ইতোমধ্যেই অন্যান্য রাজনৈতিক দলের শরণাপন্ন হচ্ছেন তিনি। শুক্রবার লাহোর শহরে তার দলের কার্যালয়ের বাইরে সমর্থকদের উদ্দেশে এক বক্তৃতায় নওয়াজ শরীফ স্বীকার করেছেন যে তার দল পিএমএল-এন এককভাবে সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় আসনে জয়ী হতে পারেনি। তিনি অন্য প্রার্থীদের তার সাথে জোটে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোনো দল এককভাবে সরকার গড়তে প্রয়োজনীয় আসন পাচ্ছে না, এটা প্রায় নিশ্চিত। এ পরিস্থিতিতে জোট সরকার গড়তে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। এর আগে ২০২২ সালে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পিপিপি ও পিএমএল-এন একসঙ্গে জোট গড়েছিল। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার কারাবন্দি থাকায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে বানানো এক ভিডিও বার্তা ইমরান খানের ভেরিফায়েড এক্স হ্যান্ডলে (টুইটার) পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে তিনি বলেন, 'এখন কেউ আমাদের আটকাতে পারবে না। আপনারা চিন্তা করবেন না, উদযাপন করুন এবং আল্লাহর শুকরিয়া করুন। দুই বছরের নিপীড়ন ও অবিচারের পরও আমরা দুই–তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নির্বাচনে জিতেছি।' তবে শুক্রবার বিবিসিকে ইমরান খানের সাবেক বিশেষ সহকারী জুলিফকার বুখারি বলেন, 'ইমরান খানকে যতদূর জানি এবং আমাদের রাজনৈতিক দল পিটিআই-এর নীতি সম্পর্কে যতদূর জানি, আমার মনে হয় না আমরা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কোয়ালিশনে যাব।'
পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে বিজয় দাবি করেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান। তার দল পিটিআই দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে না পারলেও এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হয়ে এগিয়ে রয়েছেন পিটিআই–সমর্থিত প্রার্থীরা।