title
stringlengths
10
148
text
stringlengths
14
34.6k
summary
stringlengths
1
7.08k
রূপগঞ্জে আ. লীগের ২ পক্ষের সংঘর্ষ, আহত অন্তত ৫
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার কাঞ্চন বাজারে এ ঘটনা ঘটে। রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এ ঘটনায় তাৎক্ষনিক অভিযানে ৮ জনকে আটক করা হয়েছে। কাঞ্চন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল কলি ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আব্দুর রহিম লিটুর অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই দুজনের দ্বন্দ্ব পুরোনো। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ দ্বন্দ্ব আরও বেড়েছে। আজ উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত ৫ জন আহত হয়। সংঘর্ষে গোলাম রসুলের ভাইয়ের মিষ্টির দোকান ভাঙচুর করা হয় বলে জানা গেছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের মধ্যে আব্দুর রহিমের অনুসারী রাব্বি মিয়া ও নিহাল ভূঁইয়া স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। এ বিষয়ে জানতে গোলাম রসুল ও আব্দুর রহিমকে একাধিকবার ফোন করা হলেও, তারা রিসিভ করেননি। ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, 'পুরোনো দ্বন্দ্বের জেরে তুচ্ছ ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। জড়িত সন্দেহে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৮ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।'
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে।
জাতীয় পার্টির ২৪ দফার ইশতেহার
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ২৪ দফা ইশতেহার প্রকাশ করেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। তাদের এবারের স্লোগান শান্তির জন্য পরিবর্তন, পরিবর্তনের জন্য জাতীয় পার্টি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাপার চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক ইশতেহার ঘোষণা করেন। চুন্নু বলেন, 'নব্বইয়ের প্রেক্ষাপটে পরিবর্তনের পর বিগত ৩৩ বছর দেশের মানুষ ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলোর সীমাহীন দুর্নীতি, দলীয়করণ, জনগণের সম্পদ আত্মসাৎ এবং অর্থ পাচার দেখে আসছে। যার ফলে গণতন্ত্রকামী মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। 'বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দুর্নীতিমুক্ত সমাজ, দলীয় প্রভাবমুক্ত প্রশাসন, সুশাসন ও অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। বাস্তবে বিগত শাসকরা তার প্রতিফল দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে,' যোগ করেন তিনি। জাপা মহাসচিব বলেন, 'গণতন্ত্রকে অর্থবহ করতে হলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করতে হবে। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে।' জাতীয় পার্টির ইশতেহারে রয়েছে প্রাদেশিক ব্যবস্থা প্রবর্তন, নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার, পূর্ণাঙ্গ উপজেলা ব্যবস্থা প্রবর্তন, সুশাসনের বাংলাদেশ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মামলাজটের অবসান, শিক্ষিত/অশিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণ, শিক্ষাপদ্ধতির সংশোধন, সন্ত্রাস দমন ও মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা, ইসলামের আদর্শ ও ধর্মীয় মূল্যবোধ, সর্বোচ্চ ভর্তুকি দিয়ে কৃষকের কল্যাণ সাধন, খাদ্যনিরাপত্তা, নদী সংরক্ষণ ও ভাঙনরোধে ব্যবস্থা, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে স্থিতিশীলতা, শিল্প ও অর্থনীতির অগ্রগতি সাধন, ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর স্বার্থ সংরক্ষণ, পররাষ্ট্রনীতিতে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, নারী সমাজের কল্যাণ সাধন, জলবায়ু পরিবর্তন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান-মুদ্রানীতি-রাজস্বনীতির সংস্কার, গুচ্ছগ্রাম পথকলি ট্রাস্ট পুনঃপ্রতিষ্ঠা, রেশনিং চালু, যোগাযোগ ব্যবস্থার সংস্কার ও অভিবাসন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ২৪ দফা ইশতেহার প্রকাশ করেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। তাদের এবারের স্লোগান শান্তির জন্য পরিবর্তন, পরিবর্তনের জন্য জাতীয় পার্টি।
পলাতক দলও এখন অসহযোগ আন্দোলন করে: বিএনপিকে নিয়ে কাদের
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পলাতক দলও এখন অসহযোগ আন্দোলন করে। জনগণ বিএনপির ডাকে সাড়া দেয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, জনগণ ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধেই অসহযোগ শুরু করেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। পলাতক দলও এখন অসহযোগ আন্দোলন করে মন্তব্য করে কাদের বলেন, 'যে দল আন্দোলনের আসর থেকে পালিয়ে গেল, এখন সেই দল অসহযোগ আন্দোলন করবে। তাদের ডাকে জনগণ অসহযোগ করবে, জনগণ ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধেই অসহযোগ শুরু করেছে। 'বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বিরোধীদের বিরুদ্ধে অসহযোগ শুরু হয়ে গেছে। তার প্রমাণ বাংলাদেশের হাটবাজারে যান, রাস্তাঘাটে যান, দোকানপাটে যান, জীবনযাত্রা স্বাভাবিক। এর অর্থ কী? বিএনপির ডাকে জনগণ সাড়া দেয়নি। বিএনপি যতই নির্বাচন বিরোধী গুপ্ত সন্ত্রাস করছে, অগ্নি সন্ত্রাস করছে ট্রেনে আগুন দিচ্ছে, বাস পোড়াচ্ছে, ফিসপ্লেট তুলে ফেলছে, ততই জনগণের বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে যার যার কর্মক্ষেত্রে উপস্থিতি স্বাভাবিক,' বলেন তিনি। মানুষ আজকে নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'আমরা বিশ্বাস করি, আমরা তো দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাই, গতকালও সিলেটে যে অবস্থা দেখেছি, বিএনপিকে মানুষ অসহযোগ করবে। একজন তারেক রহমান টেম্পস নদীর ওপার থেকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। সাহস থাকে তো আসুন। নেতা তো নেই, নেতা তো আসতে হবে! রিমোট কন্ট্রোলে পলাতক নেতা কীভাবে নেতৃত্ব দেবে? তাকে আসতে হবে। মানুষকে মোকাবিলা করুন, রাজপথে আসুন, জেলে যাওয়ার সাহস অর্জন করুন। তা না হলে জীবনেও নেতা হতে পারবেন না। রিমোট কন্ট্রোল নেতাকে মানুষ কখনো মানে না।' ওবায়দুল কাদের বলেন, 'ট্যাক্স যার বাকি, ট্যাক্স আদায় করব। কর্তৃপক্ষকে বলবো, ট্যাক্স আদায় করুন; যাদের ট্যাক্স বাকি। যাদের বিল বাকি, তাদের বিল আদায় করুন। ব্যাংকে যারা লোন নিয়ে পাচার করেছে, এদের তালিকা প্রস্তুত করুন। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 'বাড়ি ভাড়া বাকি, কার কার বাড়ি; বাড়ি ভাড়া আদায় করতে বলেছি। এদেরকে আর কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। ট্যাক্স ফাঁকি দিয়েছে যারা তাদের ট্যাক্স আদায় করতে হবে এবং সাজাও দিতে হবে। আমরাও ওর মধ্যে আছি,' যোগ করেন তিনি। বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'এসব গুপ্ত হামলা বন্ধ করুন। তা না হলে জনগণ আপনাদের ধরে ধরে বিচার করবে। আপনাদের প্রতিহত করবে। আপনারা গণশাস্তির জন্য অপেক্ষা করুন।' তিনি বলেন, 'জনগণ নির্বাচন চায়, আপনারা নির্বাচন পণ্ড করতে চান। সে খায়েশ আপনাদের পূর্ণ হবে না।' নির্বাচন কমিশন বলেছে, প্রচারণা শুরুর পর থেকে নির্বাচন বিরোধী সভা-সমাবেশ করা যাবে না কিন্তু বিএনপিসহ কিছু দল ও সংগঠন সভা-সমাবেশ করে যাচ্ছে। নির্বাচন বিরোধী উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে। সরকার কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না, এতে কি কোনো দুর্বলতা প্রকাশ পায় না—একজন গণমাধ্যমকর্মীর প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, 'সবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়েছে। এখানে নিজের একটা যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতি, দেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিঘ্নিত করতে সরকার তো উসকানি দিতে চায় না। টুকটাক হামলা এখানে-ওখানে হবে এটা স্বাভাবিক কিন্তু বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো, জামায়াত যা করছে সেটার বিরুদ্ধে তো অবশ্যই আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ব্যবস্থা নিচ্ছে, তৎপর হচ্ছে। জনগণের পক্ষ থেকেও নির্বাচন বিরোধী কর্মকাণ্ড প্রতিহত হবে, প্রতিরোধ হবে। এটা আমরা বিশ্বাস করি।' আরওবাসা-বাড়িতে গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি বন্ধ হয়ে গেলে কী হবে ভাবা উচিত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরওভোট বর্জন ও সরকারকে অসহযোগিতার কর্মসূচি বিএনপির আরওভোট বর্জন ও সরকারকে অসহযোগিতার কর্মসূচি বিএনপির
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পলাতক দলও এখন অসহযোগ আন্দোলন করে।
এমপি জাফর আলমকে উপজেলা আ. লীগ সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে সংসদ সদস্য জাফর আলমকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের সই করা এক নোটিশে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে অসৌজন্যমূলক বক্তব্য, ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণ ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তাকে দল থেকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না তা জানতে চেয়ে আগামী ৭ দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। তিনি নির্ধারিত সময়ে কারণ দর্শাতে ব্যর্থ হলে তাকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করার জন্য কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কাছে সুপারিশ পাঠানো হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়। জাফর আলম পেকুয়া ও চকরিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত কক্সবাজার-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন পাননি। তিনি এবং তার ছেলে তানবীর আহমদ সিদ্দিকী তুহিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় পেকুয়া উপজেলায় নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় একটি পথসভায় বক্তব্য দেন জাফর আলম। শেখ হাসিনাকে নিয়ে তখন তিনি কিছু বক্তব্য দেন, যার প্রেক্ষিতে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অব্যাহতির বিষয়ে জানতে জাফর আলমকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি।
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে সংসদ সদস্য জাফর আলমকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
তেজগাঁওয়ে বাসে আগুন
রাজধানীর তেজগাঁওয়ের কলোনি বাজার মোড়ে বিবিএস কেবলস কোম্পানির একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ বুধবার রাত ৯টা ৩৫ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিস আগুনের খবর পায় বলে জানান ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেলের গুদাম পরিদর্শক মো. আনোয়ারুল ইসলাম। এরপর তেজগাঁও ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। ৯টা ৫৮ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে তারা।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ের কলোনি বাজার মোড়ে বিবিএস কেবলস কোম্পানির একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
‘খালেদা জিয়ার আমলে যে কূপে গ্যাস পায়নি, সেই জায়গায় আমরা তেলও পেয়েছি’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০১ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলাম। ২০০১ সালের নির্বাচনে আমাদের ক্ষমতায় আসতে দিলো না। আজ বুধবার সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। এ সমাবেশের মধ্য দিয়েই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রচারণা শুরু করলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে না দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'কেন দিলো না। দিলো না এই কারণে, বাংলাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাস। আমেরিকা প্রস্তাব করল গ্যাস বিক্রি করতে হবে। কারণ আমেরিকার কোম্পানিরা এখানে গ্যাস উত্তোলন করে। আমি বলেছি আমি গ্যাস বেচব না। এই গ্যাস আমার জনগণের গ্যাস, এই গ্যাস জনগণের কাজে ব্যবহার হবে।' 'আমি বিদ্যুৎ দেবো, সার কারখানা করব, পেট্রোকেমিক্যালস করব, জনগণের কল্যাণে ব্যয় করে ৫০ বছরের রিজার্ভ রেখে যদি অতিরিক্ত থাকে, তাহলে দেব। তারা খুব নাখোশ হলেন। সিদ্ধান্ত নিলেন আমাকে ক্ষমতায় আসতে দেবেন না। তাছাড়া আমাদের দেশেরও কিছু লোক ছিল। ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসলো বিএনপি-জামায়াত জোট', বলেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, 'বিএনপি ৯৬ সালে জনগণের ভোট চুরি করেছিল ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে। এই ভোট চুরির অপরাধে এ দেশের মানুষ আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল। সেই ক্ষমতাচ্যুত ভোট চোর, জনগণের সম্পদ চোর বিএনপিকে আবার ক্ষমতায় বসালো ভোট কারচুপির মধ্য দিয়ে।' 'গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়েছিল খালেদা জিয়া। যে- সে ক্ষমতায় গেলে গ্যাস বেচবে। সেজন্য তার পিঠে বাহবা দিয়ে তাকে ক্ষমতায় বসালো। রেজাল্ট কী? জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, দুঃশাসন', যোগ করেন তিনি। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'আমি বলেছিলাম, খালেদা জিয়া গ্যাস দিতে পারবে না। কারণ গ্যাস পাবেই না। আসলে পায়নি, দিতে পারেনি। এটা হলো বাস্তবতা। যে কূপ খনন করে খালেদা জিয়ার আমলে গ্যাস পায়নি, সেই একই জায়গায় কূপ খনন করে আওয়ামী লীগের আমলে আমরা শুধু গ্যাস না, এবার আমরা তেলও পেয়েছি।' 'আল্লাহ যখন কাউকে কিছু দেয়, সেটা জন বুঝেই ধন দেয়, এটা হলো বাস্তব কথা। তারা জন বুঝে দেয়, এটাই আল্লাহর কাজ। আল্লাহ জানে ওদের কাছে দিলে সব নয়-ছয় করবে। আর আওয়ামী লীগের হাতে পড়লে জনগণের কল্যাণে কাজে লাগবে', বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০১ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলাম। ২০০১ সালের নির্বাচনে আমাদের ক্ষমতায় আসতে দিলো না।
নাশকতা মামলায় আমানসহ ২১৩ বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
কেরানীগঞ্জে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা দুই মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের মোট ২১৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। ২০১৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে ককটেল বিস্ফোরণ, রাস্তায় অবৈধ জমায়েত, দাঙ্গা, সম্পত্তির ক্ষতি, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, এবং পুলিশকে আক্রমণ এবং দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলাগুলি দায়ের করা হয়েছিল। কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় আসামিদের মধ্যে আছেন ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম রকিবুল হাসান আসামিদের কাছে অভিযোগপত্র পাঠ করে শোনানোর পর কারাগারে থাকা আমান এবং জামিনে থাকা ১৭০ জন নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চান। এর আগে আমানসহ অন্যদের মামলার অভিযোগ থেকে খালাস চেয়ে দাখিল করা আবেদন খারিজ করে দেন ম্যাজিস্ট্রেট। অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবির বাবুল জানান, আগামী ২ জানুয়ারি মামলার বিচার শুরুর দিন ধার্য করেছেন আদালত। গত বছরের ৪ জুন রাজধানীর কেরানীগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হযরতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহের হোসেনসহ বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার পর প্রথম মামলা হয়। তদন্তের পর, ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর পুলিশ আমান এবং ১৭৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয়। দ্বিতীয় মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বর রাজনৈতিক কর্মসূচি চলাকালে কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর এলাকায় বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের একদল নেতাকর্মী জড়ো হয়। এরপর তারা যানবাহন ভাঙচুর, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, পুলিশের ওপর হামলা ও দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ আমানসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করে। তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই আমান ও আরও ৩৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
কেরানীগঞ্জে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা দুই মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের মোট ২১৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।
রোববার সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ বিএনপির
আগামী রোববার সকাল-সন্ধ্যা অবরোধের ডাক দিয়েছে বিএনপি। আজ বুধবার বিকেলে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, নির্বাচন বর্জনের একদফা দাবি ও অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে আগামী ২১, ২২, ২৩ ডিসেম্বর গণসংযোগ কর্মসূচি। ২৪ ডিসেম্বর রোববার সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে। রিজভী বলেন, 'আমাদের একদফা হলো শেখ হাসিনা সরকারে পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, অবাধ-সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবি এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের চলমান আন্দোলন। এ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন বর্জন এবং অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার গণসংযোগ করা হবে।' আরওভোট বর্জন ও সরকারকে অসহযোগিতার কর্মসূচি বিএনপির এর আগে দুপুরে আরেকটি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন ও সরকারকে অসহযোগিতার কর্মসূচি পালন করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, 'আগামী ৭ জানুয়ারি আবারও একটি পাতানো নির্বাচন হতে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'প্রতিটি নাগরিকের অধিকার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে আজ ফ্যাসিস্ট অবৈধ সরকারকে সব ধরনের অসহযোগিতা শুরু করার বিকল্প নেই। জনগণের ভোটে একটি অংশগ্রহণমূলক, গণতান্ত্রিক-সাংবিধানিক তথা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমি এই মুহূর্ত থেকে বর্তমান অবৈধ সরকারকে আর কোনো রকমের সহযোগিতা না করার জন্য প্রশাসনের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং গণতন্ত্রকামী দেশ প্রেমিক জনগণের প্রতি আহ্বান জানাই।' এর আগে দুপুরে আরেকটি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন ও সরকারকে অসহযোগিতার কর্মসূচি পালন করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, 'আগামী ৭ জানুয়ারি আবারও একটি পাতানো নির্বাচন হতে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'প্রতিটি নাগরিকের অধিকার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে আজ ফ্যাসিস্ট অবৈধ সরকারকে সব ধরনের অসহযোগিতা শুরু করার বিকল্প নেই। জনগণের ভোটে একটি অংশগ্রহণমূলক, গণতান্ত্রিক-সাংবিধানিক তথা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমি এই মুহূর্ত থেকে বর্তমান অবৈধ সরকারকে আর কোনো রকমের সহযোগিতা না করার জন্য প্রশাসনের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং গণতন্ত্রকামী দেশ প্রেমিক জনগণের প্রতি আহ্বান জানাই।'
আগামী রোববার সকাল-সন্ধ্যা অবরোধের ডাক দিয়েছে বিএনপি।
বাসা-বাড়িতে গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি বন্ধ হয়ে গেলে কী হবে ভাবা উচিত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বিএনপির নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচি প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, যারা অসহযোগ আন্দোলন করছেন, বাসা-বাড়িতে গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি বন্ধ হয়ে গেলে কী হবে ভাবা উচিত। আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি; এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমি কিন্তু সব সময় বলে আসছি, তারা সুনিশ্চিত এ দেশের জনগণ তাদের ভোট দেবে না। দেশের জনগণ তাদের কর্মকাণ্ডে তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন, তখনই তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ক্রমাগতভাবে কর্মসূচি দিয়ে যাতে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি করা যায় এবং নির্বাচন যাতে না হয় সে জন্য একটা অবস্থার সৃষ্টি করছেন।' তিনি বলেন, 'আপনারা দেখেছেন, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে তারা ক্রমাগতভাবে নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছে। বাসের ভেতরে অগ্নিদগ্ধ করে, হেলপারসহ পুড়িয়ে, তারপর এখন শুরু করেছি রেল লাইন উপড়ে ফেলে দেওয়া। যাতে শত শত মানুষ...আল্লাহ তায়ালাই রক্ষা করেন; দুর্ঘটনার ভয় থেকে যেত, যায়। চারজন মানুষকে আপনারা দেখেছেন, চলন্ত গাড়িতে কীভাবে তারা পুড়িয়ে মেরেছে। এর আগেও গাজীপুর এলাকায় একটি ঘটনা ঘটিয়েছে। এই ধরনের নাশকতা তারা ক্রমাগতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। 'আমি আরেকটু মনে করিয়ে দিতে চাই, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে ৯০ দিন ক্রমাগতভাবে তারা এসব করেছে। আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে, সম্পদ ধ্বংস করেছে, জায়গায় জায়গায় রাস্তাঘাট কেটে দিয়েছে। এখন আবার একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি কীভাবে সৃষ্টি করা যায় সে জন্য পাঁয়তারা করছে,' যোগ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'আমাদের প্রধানমন্ত্রী জনগণের ম্যানডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। তিনি মনে করেন, এটাই সরকার বদলানোর একমাত্র উপায়। সে জন্য নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের যে তারিখ ঘোষণা করেছে; তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। দেশের ৪৩টির মধ্যে ২৯টি দল এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যতটুকু আমরা নির্বাচন থেকে জেনেছি। 'সব কিছু যখন ঠিকঠাক মতো চলছে, এত কিছু করার পরেও যখন মানুষ নির্বাচনমুখী হয়ে গেছে, যখন মানুষ একটা উৎসবমুখর পরিবেশের দিকে ধীরে ধীরে যাচ্ছে; আমাদের দেশে নির্বাচন কিন্তু সব সময় একটা উৎসবমুখর পরিবেশে যে যার প্রার্থীকে ভোট দেয় এবং সেই প্রার্থীর তারা জয়গান করেন, আনন্দ মিছিল করেন—সেই জায়গাটিতে চলে যাচ্ছে, সারা বাংলাদেশে এখন ভোটের আমেজ চলে এসেছে, তখন তারা ঘোষণা করছেন অসহযোগ,' বলে তিনি। গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'যারা অসহযোগ আন্দোলন করছেন, তাদের বাসা থেকে বিদ্যুৎ যদি চলে যায়, পানি যদি বন্ধ হয়ে যায়; যেহেতু অসহযোগ উনারাই চাচ্ছেন—বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যাবে, পানি বন্ধ হয়ে যাবে, সরকার অচল হয়ে যাবে। তাহলে কী হবে, তারা কি সেটা বুঝতে পারছেন? গ্যাস বিল না দিলে, বিদ্যুৎ বিল না দিলে, পানির বিল না দিলে ওয়াশা এবং বিদ্যুৎ বিভাগ অন্য গ্রাহকদের জন্য যেগুলো করে থাকে তাদের জন্য সেগুলো করবে। তাহলে কী হবে সেটা তাদের চিন্তায় নিয়ে আসা উচিত।' আসাদুজ্জামান বলেন, 'এ দেশের জনগণ তাদের চেনে। এ দেশের জনগণ এসব ডাকে কোনো দিনই রিঅ্যাকশন দেখাননি। আমার মনে হয়, নির্বাচনটি সঠিকভাবেই সময় মতো তারা নির্বাচনে ভোট দেবেন। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন এবং সুন্দর নির্বাচন নির্বাচন কমিশন আমাদেরকে উপহার দেবে।' বিশৃঙ্খলা হলে কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে, মন্ত্রণালয় কী ব্যবস্থা নেবে জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান বলেন, 'একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তারা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নিচ্ছে। তারা সব সময় নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশনা দিচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে। এই ধরনের চিঠি আসতেই পারে। তবে এখনো আমার কাছে আসেনি। এলে যা করা উচিত সেটাই আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় করবে।' আরওভোট বর্জন ও সরকারকে অসহযোগিতার কর্মসূচি বিএনপির
বিএনপির নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচি প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, যারা অসহযোগ আন্দোলন করছেন, বাসা-বাড়িতে গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি বন্ধ হয়ে গেলে কী হবে ভাবা উচিত।
একজন লন্ডন বসে হুকুম দেয়, এখানে কিছু চ্যালা আগুন দেয়: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন ও ভোট দিতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার দুপুরে সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজার জিয়ারত শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'আমার তো বার্তা একটাই। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার যে স্বপ্ন আমার বাবা দেখেছেন, আমি সেটাই করতে চাই। আর আমরা নির্বাচনী প্রচারকাজ শুরু করেছি এবং আজকে আমরা এখানে এসেছি। হযরত শাহজালাল (রহ.) দরগা ও শাহপরাণের দরগা আমরা জিয়ারত করব। এখানে জনসভা করব। এরপর আরও কয়েকটি জনসভা করব। আর তা ছাড়া এবার ভিডিও কনফারেন্সিং করেও অনেক জেলায় আমরা যোগাযোগটা রাখব, করব। কারণ ডিজিটাল বাংলাদেশ, সেটা তো করতে হয়। আমার একটাই কথা, আওয়ামী লীগ সরকার আসলে জনগণের কল্যাণ হয়। ২০০৯ সালে সরকার গঠন করেছিলাম। বাংলাদেশের জনগণ ২০১৪ সালে আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। ২০১৮ সালে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে।' তিনি বলেন, 'আজকে এই যে সিলেটে আমি এসেছি, এই সিলেটে কিন্তু এখন আর কোনো ভূমিহীন, গৃহহীন মানুষ নেই। প্রত্যেকটা ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষকে আমরা ঘর করে দিতে পেরেছি। কমিউনিটি ক্লিনিক দিয়েছি তাদের চিকিৎসার জন্য। অর্থাৎ মানুষের যে মৌলিক চাহিদাগুলি, সেগুলো আমরা পূরণ করে যাচ্ছি এবং যেটুকু বাকি আছে, ইনশাআল্লাহ আগামীতে নির্বাচন ৭ জানুয়ারি, বাংলাদেশের জনগণ যদি নৌকা মার্কায় ভোট দেয়, আবার যদি সরকার গঠন করতে পারি, পুরো বাংলাদেশটাকেই আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ করব। আর কোনো মানুষই ঠিকানাবিহীন থাকবে না, গৃহহীন-ভূমিহীন থাকবে না। এটাই আমাদের নিয়ত। আর কিচ্ছু না। বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে বাংলাদেশটাকে উন্নত-সমৃদ্ধ করা। ইতোমধ্যে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। কিন্তু সেটাকে কার্যকর করতে হবে। আমি জানি আমাদের সরকার আসলে পরেই এটা কার্যকর হবে।' 'আরেকটা কথা হচ্ছে, যারা নির্বাচন করবে না, করবে না। কিন্তু আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা, আগুন দিয়ে, সরকারি সম্পত্তির মালিক, এটা তো জনগণের সম্পত্তি। নতুন নতুন কোচ কিনে নিয়ে এনেছি, নতুন রেল, সেই রেললাইন তুলে ফেলে অ্যাক্সিডেন্ট করে মানুষ হত্যা করা, এটা তো সম্পূর্ণ সন্ত্রাসী কাজ, জঙ্গিবাদী কাজ। আর সেই সন্ত্রাসী-জঙ্গিবাদী কাজ করে যাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত জোট মিলে। কারণ বিএনপির তো এই একটাই, আমরা ২০১৩ সালে দেখেছি, ২০১৪-তেও দেখেছি, মানুষ পুড়িয়ে মারা। এটা কোন ধরনের আন্দোলন? গতকালকে যে ঘটনাটা ঘটল, তারা তো হরতাল দিয়েছে, দেশের মানুষ তো হরতাল মানেও নাই। তাদের ডাকে কোনো সাড়াই দেয়নি। এটা তাদের বোঝা উচিত, এই দেশের মানুষ নির্বাচন চায়, ভোট দিতে চায়। আমরা ভোটের জন্য সব সম্পূর্ণ উন্মুক্ত করে দিয়েছি, আমাদের দলকেও যে, ঠিক আছে, সবাই দাঁড়াবে, সবাই কাজ করবে, জনগণ যাকে বেছে নেবে, সেটাই।' প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কিন্তু সেখানে আমরা কী দেখলাম? রেলে আগুন দিলো। একটা মা সন্তানকে নিয়ে সেই আগুনে পুড়ে মারা গেল। মা সন্তানকে কিন্তু বুকের মধ্যে চেপে রেখে দিয়েছে। মানে এরচেয়ে কষ্টের সিন বোধ হয় আর কিছু হতে পারে না, কষ্টের দৃশ্য আর হতে পারে না। কী করে একটা মানুষ এভাবে করতে পারে? আজকে নারী, শিশু, পুলিশের ওপর হামলা, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, চিফ জাস্টিসের বাড়িতে হামলা, জজ কোর্টে হামলা, জনগণের ওপর হামলা, এসব কোন ধরনের রাজনীতি। জনগণের কাছে তাদের কর্মসূচি নিয়ে যাবে, জনগণ যদি তাদের ডাকে সাড়া দেয়, তখন আসবে। কিন্তু মানুষকে মেরে একটা ভীতি সৃষ্টি করে তারা নির্বাচন বানচাল করছে। তাদের অভিজ্ঞতা নাই, তারা চেয়েছে সেটা পারেনি, ২০১৪ সালে পারেনি, তাহলে আবার কেন এই আগুন দিয়ে পোড়ানো? 'আর বেশ ভালোই খেলা চলছে। একজন লন্ডন বসে হুকুম দেয়, আর এখানে তার কিছু চ্যালা আছে আগুন দেয়। বাংলাদেশ নিয়ে এইভাবে খেলা, দুর্বৃত্তপরায়ণতা বাংলাদেশের মানুষের কেউ মেনে নেবে না। সেটাই আমরা চাই। মানুষ এত শান্তিতে ছিল, আজকে এত কষ্টের পরেও, কোভিড হলো, ইউক্রেন যুদ্ধ, স্যাংশন, সবকিছুর পরেও আমরা তো আমাদের অর্থনীতিটা ধরে রেখেছিলাম। মানুষের জন্য খাবারের ব্যবস্থা, ভর্তুকি দিয়ে দিয়ে আমরা তাদের জন্য খাবার কিনে নিয়ে এসে তাদের দিচ্ছি, সব রকম ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। রাস্তাঘাট সবকিছুই তো উন্নতি করেছি। কোথায় কোন জায়গাটা আমরা বাদ রেখেছি? আমাদের বিরুদ্ধে এখন আন্দোলন করার নাম দিয়ে তারা এভাবে দুর্বৃত্তপরায়ণতা করছে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাবে।' শেখ হাসিনা বলেন, কিন্তু আমি বলব যে, এই জিনিসটা তুলে দেওয়া উচিত যে, ভোট জনগণের অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার। সেই ভোট জনগণ দেবে। সেই ভোট দিতে জনগণ আসবে, তাদের বাধা দেওয়া, তাদের খুন করা, এই অধিকার কারো নাই। এটা বাংলাদেশের কেউ মানবেও না। এটা যারা করবে, তারা একদিন, আমি মনে করি এদেশের মানুষ তাদের উৎখাত করবে। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, '(যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে, তাদের বিরুদ্ধে) আমরা যথেষ্ট কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। সমস্ত জায়গায় আমরা পরিকল্পনা করে ব্যবস্থা নিচ্ছি। এই যে হঠাৎ হঠাৎ একেকটা ঘটনা ঘটিয়ে ফেলা, এই ঘটনাগুলো যারা এভাবে ঘটাচ্ছে... যারা এই অগ্নিসন্ত্রাসে জড়িত, যারা হত্যা করেছে, কারো ক্ষমা নাই। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবোই।' অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি  বলেন, 'তারা (বিএনপি) নির্বাচন বানচাল করতে চায়। মানুষকে ভোট দিতে দেবে না। মানুষ কিন্তু ভোটের পক্ষে। মানুষ নির্বাচনের পক্ষে। মানুষ তো তাদের হরতালে সাড়া দিচ্ছে না। মানুষ বরং ভোটের মিছিলে যোগ দিচ্ছে। তাহলে এরপরেও কেন আবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, সেটাই আমার প্রশ্ন। এতে তাদের কী অর্জন হবে? হয়তো মানুষের দ্বারা আরও ধিক্কৃত হবে।' বিদেশে বসে যারা এই ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ইন্ধন দিচ্ছে, তারা কি সফল হবে—এমন প্রশ্নের উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, 'কোনোদিন সফল হবে না, হতে পারে না। এই ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে জনগণকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি, এটাই বাস্তবতা।'
বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন ও ভোট দিতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভোট বর্জন ও সরকারকে অসহযোগিতার কর্মসূচি বিএনপির
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন ও সরকারকে অসহযোগিতার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচি পালনে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বাংলাদেশকে একটি রাষ্ট্রের স্যাটেলাইট স্টেট করার চক্রান্ত চলছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী বলেছেন বিএনপি নাকি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করছে, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে বলেছেন। বিএনপি ও সমমনা দল; আজকে ৬৩টি দল যে সংগ্রাম করছে, এটা একদিকে যেমন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন, জনগণের মালিকানা জনগণকে ফিরিয়ে দেওয়ার আন্দোলন, আরেকটা হচ্ছে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার আন্দোলন। বাংলাদেশ যাতে উপনিবেশে পরিণত না হয় সেটা প্রতিরোধ করতে এ আন্দোলন।' আগামী ৭ জানুয়ারি আবারও একটি পাতানো নির্বাচন হতে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'প্রতিটি নাগরিকের অধিকার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে আজ ফ্যাসিস্ট অবৈধ সরকারকে সব ধরনের অসহযোগিতা শুরু করার বিকল্প নেই। জনগণের ভোটে একটি অংশগ্রহণমূলক, গণতান্ত্রিক-সাংবিধানিক তথা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমি এই মুহূর্ত থেকে বর্তমান অবৈধ সরকারকে আর কোনো রকমের সহযোগিতা না করার জন্য প্রশাসনের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং গণতন্ত্রকামী দেশ প্রেমিক জনগণের প্রতি আহ্বান জানাই।' বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন বলে জানান রিজভী। জনগণের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, 'আগামী ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচন বর্জন করুন। নির্বাচনের নামে ৭ জানুয়ারি বানর খেলার আসরে অংশ নেবেন না। আপনারা কেউ ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। এটি আপনার গণতান্ত্রিক অধিকার। নির্বাচন কমিশন ৭ জানুয়ারি কাকে এমপি ঘোষণা করবে গণভবনে সেই তালিকা তৈরি হয়ে গেছে।' সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচনী দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'বর্তমান অবৈধ সরকারের সব ধরনের ট্যাক্স, খাজনা ইউটিলিটি বিল এবং অন্যান্য প্রদেয় স্থগিত রাখুন। ব্যাংকগুলো এই সরকারের লুটপাটের অন্যতম মাধ্যম, সুতরাং ব্যাংকে টাকা রাখা নিরাপদ কি না সেটি ভাবুন।' রিজভী বলেন, 'মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় অভিযুক্ত লাখ লাখ রাজনৈতিক নেতাকর্মী, আপনারা আজ থেকে আদালতে হাজিরা দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। আপনাদের প্রতি সুবিচার করার আদালতের স্বাধীনতা ফ্যাসিবাদী সরকার কেড়ে নিয়েছে।'
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন ও সরকারকে অসহযোগিতার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
ঝিনাইদহ-২: ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহরিয়ার জাহেদী মহুলের নির্বাচনী অফিসে হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার পরে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার শাখারীদহ বাজারে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমির সমর্থক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহরিয়ার জাহেদী মহুলের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা শুরু হয়। এক পর্যায়ে তাহজীবের সমর্থকরা শাহরিয়ারের নির্বাচনী অফিসে হামলা করে। এ বিষয়ে কথা বলতে তাহজীব ও শাহরিয়ারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তারা রিসিভ করেননি। হরিণাকুণ্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শাখারীদহ বাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী অফিসে নৌকা সমর্থকরা হামলা চালিয়ে বেশ কিছু চেয়ার ভাঙচুর করেছে।‌ তবে কেউ আহত হয়নি।'
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহরিয়ার জাহেদী মহুলের নির্বাচনী অফিসে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
‘এমন কোনো প্লেয়ার নেই নিক্সন চৌধুরীর তিন থানায় ভোট কাটবে’
ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) আসনের সংসদ সদস্য ও যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন বলেছেন, 'বাংলাদেশে এমন কোনো প্লেয়ার এখনো পয়দা হয় নাই যে নিক্সন চৌধুরীর তিন থানায় এসে ভোট কাটবে।' আজ মঙ্গলবার বিকেলে ভাঙ্গার আজিমনগর ইউনিয়নের শিমুলবাজারে আয়োজিত সভায় তিনি এ কথা বলেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নিজের নির্বাচনী প্রতীক ঈগল মার্কার  প্রচারণায় এই সভার আয়োজন করা হয়। ওই আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহকে চাচা সম্বোধন করে নিক্সন বলেন, 'আপনি তো চাচা, দুইবার ইলেকশন কইরা ভাইস্তারে চিনলেন না! আপনার মতো একটা না, ১০০ প্লেয়ারও ভোট কাটার ক্ষমতা রাখে না। ধমক কম দেন। বাংলাদেশে এমন কোনো প্লেয়ার এখনো পয়দা হয় নাই যে নিক্সন চৌধুরীর তিন থানায় এসে ভোট কাটবে। সে যত বড় নেতা হোক আর হেভিওয়েট হোক।' কাজী জাফর উল্যাহর উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, 'গতবার সিংহের (২০১৮ সালের নির্বাচনে নিক্সনের প্রতীক) থাবায় আপনি পাঁচ বছর এলাকায় আসেন নাই। এবার ঈগলের ছোবলে আরও ১০ বছর আসবেন না। 'বারবার আমার ফুপু শেখ হাসিনা নৌকাটা আপনাকে দেয় আর বৈঠাটা আমাকে দেয়। আমি সেই বৈঠা নিয়ে ভেলা বেয়ে নদী পার হই, আর আপনি খালি নৌকা নিয়ে নদীর মধ্যে খালি ঘুরেন,' বলেন তিনি। সভায় ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা ফাইজুর রহমানসহ স্থানীয় যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) আসনের সংসদ সদস্য ও যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন বলেছেন, 'বাংলাদেশে এমন কোনো প্লেয়ার এখনো পয়দা হয় নাই যে নিক্সন চৌধুরীর তিন থানায় এসে ভোট কাটবে।'
নারায়ণগঞ্জে অনুসারীদের নিয়ে মহাসড়কে কায়সারের মিছিল, যান চলাচল বিঘ্ন
কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মিছিল করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। এ সময় শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে তার অনুসারীরা মিছিলে অংশ নেন। এতে যান চলাচল বিঘ্নিত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় মিছিলটি সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর এলাকা থেকে শুরু হয়। এরপর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে মোগরাপাড়া এলাকায় উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে কায়সার হাসনাতের স্ত্রী রুবিয়া সুলতানা, সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, সহসভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুম, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহাগ রনিসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। মিছিলের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট দেখা দেয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। মিছিল শেষে মোগরপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন নেতাকর্মীরা। মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে তারা নৌকার পক্ষে স্লোগান দেন। এদিন বিকেলেও কায়সার হাসনাত সোনারগাঁ জাদুঘর রোডেও মিছিল করেন। সে সময়ও যান চলাচলে বিঘ্নে ঘটে। মিছিল শেখে শেখ রাসেল স্টেডিয়ামে গিয়ে বক্তব্য রাখেন কায়সার। তিনি নৌকার পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন। নির্বাচনী আচরণবিধির ৬(ঘ) অনুযায়ী, জনগণের চলাচলের বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো সড়কে জনসভা, পথসভা কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কেউ করতে পারবেন না। এছাড়া আচরণবিধির ৮(ক) অনুযায়ী, কোনো প্রার্থী ট্রাক, বাস, মোটরসাইকেল, নৌযান বা অন্য কোনো যান্ত্রিক বাহন নিয়ে মিছিল কিংবা মশাল মিছিল বের করতে পারবেন না। জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত বলেন, 'দীর্ঘ দিন এই আসনটিতে নৌকার প্রার্থী ছিল না। এবার প্রার্থী পেয়ে আনন্দিত হয়ে দলীয় নেতাকর্মীরা মিছিল করেছেন। আমরা সরাসরি মহাসড়কে ছিলাম না, ডাইভারশন রোডের ওপর ছিলাম। আমরা কোনো যানজট তৈরি করিনি।' যোগাযোগ করা হলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) দিপন দেবনাথ বলেন, 'সড়কে যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে কোনো প্রকার প্রচারণা বা মিছিল করা যাবে না। এটি করলে নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন হবে। যদিও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে নৌকার প্রার্থীর মিছিলের বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেননি। তবে আমরা এই বিষয়ে খোঁজ নেবো।'
কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মিছিল করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত।
চ্যানেল ২৪ কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করেনি: মন্ত্রণালয়
কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চ্যানেল ২৪-কে কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের দেওয়া বক্তব্য নিয়ে 'বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোনো অবকাশ নেই'। আজ মঙ্গলবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার কামরুল ইসলাম ভূইয়ার সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়। এতে বলা হয়েছে, 'গত রোববার নিজ বাসভবনে চ্যানেল ২৪-কে দেওয়া কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে এবং গণমাধ্যমে নানা ধরণের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হওয়ায় তিনি গতকাল তার অফিসে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে নিজ বক্তব্যের ব্যাখ্যা তুলে ধরেছেন। তিনি তার স্বভাবসুলভ যুক্তিপূর্ণ ভাষায় নিজ বক্তব্যের যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা এতটাই স্পষ্ট যে সেই বক্তব্য নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোনো অবকাশ নেই।' এতে আরও বলা হয়, 'তিনি সুস্পষ্ট ভাষায় বলেছেন যে আওয়ামী লীগ এ দেশের প্রাচীনতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল এবং ঐতিহ্যগতভাবে গণতান্ত্রিক পন্থায় বিশ্বাসী। আওয়ামী লীগ অত্যন্ত আন্তরিকভাবে সব সময় চেয়েছে বিএনপি নির্বাচনে আসুক, স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করুক।' 'সেই লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী মহল থেকে বিভিন্ন সময় বিএনপিকে শর্তহীন আলোচনার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিএনপি সে সুযোগ গ্রহণ না করে সাংবিধানিকভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তনের বদলে নির্মম-নিষ্ঠুরভাবে পিটিয়ে মানুষ হত্যা, পুলিশ হত্যা, হাসপাতাল ও প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মতো জঘন্য কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করতে চেয়েছে। আগুন দিয়ে জীবন্ত মানুষকে লাশ বানানোর মতো বর্বরোচিত নাশকতার মাধ্যমে জনমনে চরম ভীতি সঞ্চার ও নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।' 'দেশের জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে ও সংবিধানকে সমুন্নত রেখে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার স্বার্থে এ ধরণের জঘন্য কর্মকাণ্ডে জড়িত সন্ত্রাসীদের ও সন্ত্রাসের মদতদাতাদের গ্রেপ্তার করা ছাড়া সরকারের কোনো গত্যন্তর ছিল না।' 'সেইসঙ্গে তফসিল ঘোষণার পরও বিদ্যমান সংবিধানের আওতায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা নিয়ে নির্বাচন কমিশন বিএনপিকে বারবার আলোচনায় আসার, এমনকি নির্বাচন পিছিয়ে দিয়েও বিএনপিকে নিয়ে নির্বাচন করার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবুও বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি। এসব উদ্যোগের সূত্র ধরেই ড. রাজ্জাক তার বক্তব্য রেখেছেন।' 'তিনি অকপটে খোলাসা করে বলেছেন যে, নির্বাচন ভণ্ডুল করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করাই বিএনপির মূল লক্ষ্য। বিএনপি যদি তাদের ভুল বুঝতে পেরে নির্বাচনে আসতে রাজি হতো, তাহলে তারা হরতাল, অবরোধ, অগ্নিসন্ত্রাস ও সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ড থেকে নিবৃত্ত হতো। তখন যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের জামিন পাওয়া সহজ হতো।' 'কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো, চ্যানেল ২৪ কৃষিমন্ত্রীর পুরো বক্তব্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করেনি। কৃষিমন্ত্রী তার বক্তব্যে কোথাও বলেননি যে, এক রাতের মধ্যে বিএনপির সব নেতাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। সে কারণেই কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের এমন খোলামেলা বক্তব্যকে কোনো কোনো মহল বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। কৃষিমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং সত্য আপন জ্যোতিতেই উদ্ভাসিত থাকবে।'
কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চ্যানেল ২৪-কে কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের দেওয়া বক্তব্য নিয়ে 'বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোনো অবকাশ নেই'।
গাইবান্ধায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ, আহত অন্তত ২৩
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় জুনদহ এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় তিন পুলিশসহ অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বগুড়া-রংপুর মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। গাইবান্ধার সহকারী পুলিশ সুপার উদয় কুমার সাহা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জুনদহ এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে মহাসড়কে উঠে যানবাহন ভাঙচুর শুরু করে। এসময় বগুড়া থেকে গাইবান্ধাগামী একটি বাস ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গেলে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এসময় বিএনপি নেতাকর্মীদের ছোড়া ইট-পাটকেলে পলাশবাড়ী থানার এক সব-ইন্সপেক্টর ও দুজন কনস্টেবল আহত হন।' তিনি বলেন, 'পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল ও শটগানের ফাঁকা গুলি করে।' স্থানীয়রা জানান, হরতালের সমর্থনে বিএনপি নেতাকর্মীরা সকাল থেকেই ওই এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। পরে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত তারা মহাসড়কে বাসসহ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করেন। এ বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক ও পলাশবাড়ী পৌর-বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা সড়কে মিছিল করার সময় বাসটি আমাদের মিছিলে ঢুকে পড়ে। এসময় বিক্ষুব্ধ কয়েকজন বাসটি ভাঙচুর করে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলে তাদের সঙ্গে দুপুর ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এসময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা আরও কিছু যানবাহন ভাঙচুর করেন।' পুলিশের টিয়ারশেল ও শটগানের গুলিতে বিএনপির অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় জুনদহ এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় তিন পুলিশসহ অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত সিলেট
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করতে আগামীকাল বুধবার সিলেটে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে আগামীকাল দুপুর ২টায় নগরীর চৌহাট্টা এলাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আয়োজিত মহাসমাবেশের সকল প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ এ সমাবেশের আয়োজন করছে। কাল সকালে সিলেট পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী হযরত শাহজালাল ও শাহপরানের মাজার জিয়ারত করবেন। পরে মহাসমাবেশে বক্তব্য রাখবেন। সমাবেশ আয়োজনের দায়িত্বে থাকা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, মাঠ ও মঞ্চ ইতিমধ্যে প্রস্তুত হয়েছে। ১০ লাখের বেশি মানুষের সমাগমের লক্ষ্য রেখে প্রচারণা চলছে। কেবলমাত্র মাঠ নয়, প্রধানমন্ত্রী সফরের সময় যে রাস্তাগুলো ব্যবহার করবেন সেগুলোও সাজানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের সিলেট জেলা শাখার সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, সিলেটের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জনসভা করার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ঐতিহাসিক সমাবেশে সারা বিভাগের নেতাকর্মীরা যোগ দেবেন। গত বছরের ২১ জুন বন্যার সময় প্রধানমন্ত্রীর শেষবার সিলেট সফর করলেও সে সময় কোনো গণসমাবেশ হয়নি। ২০১৮ সালে একই মাঠে তার শেষ গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করতে আগামীকাল বুধবার সিলেটে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ইফতেখার-সুজন সব ভুয়া, বিএনপির দোসর: কাদের
রেলে যারা আগুন দিয়ে চারটি প্রাণ খুন করেছে, তাদের ক্ষমা নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ মঙ্গলবার বিকেলে বিজয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিজয় শোভাযাত্রা উদ্বোধনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ সকালে বাচ্চা মায়ের কোলে, সে মা বাচ্চাসহ ট্রেনে দেওয়া আগুনে পুড়ে চারটি তাজা প্রাণ ঝরে গেল। গাজায় ইসরাইল যে গণহত্যা করছে, সে একই দৃশ্য আজ বাংলাদেশে আমরা দেখলাম। যারা হত্যা করেছে, তাদের ক্ষমা নাই। 'তাদের (বিএনপি) আন্দোলন মানুষ পুড়িয়ে মারার আন্দোলন', বলেন তিনি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা ভোটকেন্দ্রে আসতে বাঁধা দিবে, যারা নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে চাইবে, তাদের মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনমুখী, তারাই ওদের প্রতিহত করবে। ওদের প্রতিহত করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো জয়ের বন্দরে পৌঁছাবে। বিএনপিকে নিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি নাই, খবর নাই, বিএনপি ভুয়া, ২৮ দফা ভুয়া, ২৮ তারিখ ভুয়া, এক দফা খাদে পড়ে গেছে। 'ফাইনাল খেলবে কারা? এক হাজার ৮৯৬ জন। প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ইলেকশন হবে। দল আছে ২৭টা। তাহলে যারা বলে (নির্বাচন) প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে না, তারা ভুয়া। ইফতেখার ভুয়া, সুজন ভুয়া, এগুলো সব ভুয়া। এগুলো সব বিএনপির দোসর', বলেন ওবায়দুল কাদের। এর আগে, বিজয় শোভাযাত্রা ঘিরে দুপুর থেকে ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি) প্রাঙ্গণে জড়ো হতে শুরু করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদক জানান, ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে নেতাকর্মীরা ট্রাক, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে ঘটনাস্থলে আসেন। বিকেল ৪টার দিকে শোভাযাত্রা শুরু হয়। আইইবি প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হওয়া শোভাযাত্রাটি ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
রেলে যারা আগুন দিয়ে চারটি প্রাণ খুন করেছে, তাদের ক্ষমা নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সরিষাবাড়ীতে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ৪
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্বতন্ত্র ও নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া, পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে স্টেশন এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, স্টেশন এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রশীদ সমর্থক মিঠুর সাথে নৌকার প্রার্থী মাহবুবুর রহমান হেলালের সমর্থক লুৎফর রহমানের দলীয় প্রতীক নিয়ে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই পক্ষের চার জন আহত হয়। আহতরা হলেন, মিঠু, লুৎফর রহমান, ফারুক হোসেন ও বেলাল হোসেন। নৌকার প্রার্থী মাহবুবুর রহমান হেলাল জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যক্ষ আবদুর রশীদের লোকজন প্রথমে পরিকল্পিতভাবে সাবেক কমিশনার বেলালের উপর আক্রমণ চালালে পরিস্থিতি খারাপ হয়ে ওঠে। এসময় বেলাল ও লুৎফর আহত হয়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে নিয়ন্ত্রণ করে। স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যক্ষ আবদুর রশীদ (ট্রাক প্রতীক) জানান, নৌকা সমর্থকরা আমার দুই কর্মীর ওপর হামলা করে গুরুতর আহত করে। এ আমার সমর্থক মিঠু সরিষাবাড়ী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুশফিকুর রহমান জানান, সকালে সরিষাবাড়ী প্রেসক্লাবের সামনে নৌকা সমর্থক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আব্দুর রশীদ সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্বতন্ত্র ও নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া, পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
২৮ অক্টোবরের পর বিএনপির ২১৮৩৫ নেতাকর্মী আটক: বিজেএএফ
বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম (বিজেএএফ) বলেছে, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিএনপির ২১,৮৩৫ জন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। বিজেএএফ এর মহাসচিব কায়সার কামাল আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই কথা দাবি করেন। আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে দেওয়া বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এই কথা বলেন তিনি। সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাউথ হলে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে কায়সার কামাল বলেন, গত ১৪ সপ্তাহে ৭৯টি মামলায় বিএনপির ১ হাজার ২৪৯ জন নেতাকর্মী আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজা পেয়েছেন। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে সরকারের উদ্যোগের কথা বলেছিলেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, 'বারবার বলা হয়েছে নির্বাচন কমিশন থেকে, তারা যদি নির্বাচনে আসে, নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হবে এবং পিছিয়ে দেওয়া নয়, বলা হয়েছিল তাদের জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।' সাক্ষাৎকারে আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, '২০ হাজার (বিএনপি নেতাকর্মী) গ্রেপ্তার না করলে আজকে এই যে গাড়ি চলতেছে হরতালে, আপনি কি রাস্তায় গাড়ি দেখতেন? এ ছাড়া আমাদের জন্য কোনো গত্যন্তর ছিল না, কোনো অলটারনেটিভ ছিল না। যেটা করেছি, আমরা চিন্তাভাবনা করে করেছি।' বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আব্দুর রাজ্জাকের এই অকপট বক্তব্য 'ফ্যাসিবাদী' সরকারের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অধীনস্থ করার স্বীকারোক্তি। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বিজেএএফ সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, মো. বদরুদ্দোজা বাদল ও মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল। বিজেএএফের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন।
বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম (বিজেএএফ) বলেছে, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিএনপির ২১,৮৩৫ জন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।
বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে আওয়ামী লীগ: কৃষিমন্ত্রী
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নিয়ে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি মনে করেন, তার বক্তব্য ঠিক আছে এবং তিনি সামান্যতম ভুল বলেননি। আজ সোমবার সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। কৃষিমন্ত্রী বলেন, 'আমি বলতে চেয়েছি, আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক দল। আওয়ামী লীগ সব সময় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চেতনা লালন করে। আমরা সব সময় চেয়েছি, এই নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করুক। সেটা বহুবার আমি বলেছি। অবশ্যই বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল, তাদের নির্বাচনে আমরা আনতে চেষ্টা করেছি কিন্তু সংবিধানের বাইরে আমাদের যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। 'আমার কথা মূল বক্তব্য ছিল, প্রধানমন্ত্রী সব সময় চেয়েছেন এই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করুক। সেটা বলতে গিয়ে আমি বলেছি কতদূর...নির্বাচন কমিশনের কথা বলেছি। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।' কৃষিমন্ত্রী বলেন, 'আমি মনে করি, আমি যা বলেছি, ভুল বলিনি। সামান্যতম ভুল বলিনি। একদম বক্তব্য ঠিক আছে। অনেক কথা মধ্যে এসেছে তো, কাজেই ওরা দেখায়নি।' তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগ আন্তরিকভাবে চেয়েছে বিএনপি অংশগ্রহণ করুক। এই কথাটা বলতে গিয়ে আমি সেদিন কিছু কথা-বার্তা বলেছি। আমি সেদিন এটাও বলেছি, বিএনপি চায় যে নির্বাচনটা বানচাল হোক, তারেক জিয়ার নামে মামলা রয়েছে, তার শাস্তি রয়েছে। সে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। তার মা অসুস্থ, তারও শাস্তি রয়েছে। কাজেই আমার ধারণা, আমার ভুল হতে পারে, আমার ধারণা তারা নির্বাচনে আসতে চান না। তারা সব সময় চেয়েছেন নির্বাচন বানচাল করতে। 'আওয়ামী লীগের বক্তব্য হলো সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনো ক্রমেই নির্বাচন করা সম্ভব না। পৃথিবীর কোনো দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই। জাপান, ভারত, শ্রীলঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, পৃথিবীর কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন হয় না। কাজেই আওয়ামী লীগের তো কোনো বিকল্প নেই। এই কথাটাই আমি বলেছি। এই পদ্ধতির মধ্যে থেকে বিএনপি বলতে পারতো নির্বাচন কীভাবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করা যায়,' বলেন তিনি। কৃষিমন্ত্রী বলেন, 'সে ক্ষেত্রে আমরা আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন নিতে পারতাম। আরও অনেক বেশি মনিটর আসতো বিদেশ থেকে। তারা কাজ করতো। এই যে এখন ওসিদের বদলি করছে, এ রকম এসপিদের কথা যেত, ডিসিদের করা যেত। অর্থাৎ নির্বাচনটা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ করার জন্য যা যা করা দরকার; সংবিধান, প্রধানমন্ত্রী, এই সরকার রেখে আওয়ামী লীগ সব সময় করতে চেয়েছে। বিএনপি সেটা বিশ্বাস করেনি। বিএনপি গেছে আন্দোলনে। আন্দোলনের নামে যখন প্রধান বিচারপতির বাসায় আগুন দেয়, বাড়িতে আক্রমণ করে। আমার পাশের বাড়ি, আমি সেদিন বাড়িতে ছিলাম। সেদিন যদি তারা সফল হতো, পুলিশ যদি না আসতো, তারা আমার বাসায় আক্রমণ করতো।'
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নিয়ে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।
রিমান্ড ও জামিন আবেদন নামঞ্জুর, ফখরুল-খসরু কারাগারে
পল্টন থানায় ও পুলিশের ওপর হামলা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে রিমান্ডে নিতে পুলিশের আবেদন এবং তাদের আইনজীবীদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী এ আদেশ দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একই সাথে আদালত পুলিশকে দুই কার্যবিদবসের মধ্যে জেল গেটে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন। আরওরিমান্ড শুনানির জন্য আদালতে ফখরুল ও খসরু পল্টন থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুমিত কুমার সাহার শনিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ দুপুর ১টার দিকে মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরুকে আদালতে হাজির করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা আদালতকে বলেন, গত ২৮ অক্টোবর বিকেলে পল্টন মডেল থানায় হামলার ঘটনায় করা মামলায় মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরু এজাহারনামীয় আসামি। এজাহারে বলা হয়, তাদের নির্দেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা থানার সামনে জড়ো হয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এবং পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় ফখরুল ও আমীর খসরুসহ ১০২ জনের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মামলা করে পুলিশ। তদন্ত কর্মকর্তা তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আরওপল্টন থানায় হামলা মামলায় ফখরুল ও খসরুকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন অপরদিকে মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরুর আইনজীবী জয়নুল আবেদীন মেছবাহ দুই নেতার জামিন আবেদন করেন। জামিন শুনানির আগে মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরুকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবী মহসিন মিয়া আদালতকে বলেন, মির্জা ফখরুল একজন বয়স্ক মানুষ, তিনি হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তাকে এই মামলায় অযথা হয়রানির জন্য জড়ানো হয়েছে। তিনি নির্দেশদাতাও নন এবং ঘটনাস্থলেও ছিলেন না। তাই তার বয়স, রাজনৈতিক পদমর্যাদা এবং অসুস্থতা বিবেচনা করে রিমান্ডের আবেদন নামঞ্জুর পূর্বক জামিন মঞ্জুরের আবেদন করা হোক। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত উভয় আবেদন নামঞ্জুর করে দুই নেতাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আরওসিএমএম কোর্টকে মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ হাইকোর্টের গত ২৮ অক্টোবর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় পরদিন মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে আদালতে হাজির করা হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রশিদুল আলম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।  পরে ২২ নভেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন সেশন জজ আদালত আবারও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। ৭ ডিসেম্বর তৃতীয়বারের মতো তার জামিন আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। গত ৩ নভেম্বর গুলশান এলাকা থেকে আমীর খসরুকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে কনস্টেবল নিহতের ঘটনায় করা মামলায় তাকে ছয় দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। আরওমির্জা ফখরুলকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, হাইকোর্টের রুল পল্টন থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুমিত কুমার সাহার শনিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ দুপুর ১টার দিকে মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরুকে আদালতে হাজির করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা আদালতকে বলেন, গত ২৮ অক্টোবর বিকেলে পল্টন মডেল থানায় হামলার ঘটনায় করা মামলায় মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরু এজাহারনামীয় আসামি। এজাহারে বলা হয়, তাদের নির্দেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা থানার সামনে জড়ো হয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এবং পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় ফখরুল ও আমীর খসরুসহ ১০২ জনের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মামলা করে পুলিশ। তদন্ত কর্মকর্তা তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আরওপল্টন থানায় হামলা মামলায় ফখরুল ও খসরুকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন অপরদিকে মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরুর আইনজীবী জয়নুল আবেদীন মেছবাহ দুই নেতার জামিন আবেদন করেন। জামিন শুনানির আগে মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরুকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবী মহসিন মিয়া আদালতকে বলেন, মির্জা ফখরুল একজন বয়স্ক মানুষ, তিনি হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তাকে এই মামলায় অযথা হয়রানির জন্য জড়ানো হয়েছে। তিনি নির্দেশদাতাও নন এবং ঘটনাস্থলেও ছিলেন না। তাই তার বয়স, রাজনৈতিক পদমর্যাদা এবং অসুস্থতা বিবেচনা করে রিমান্ডের আবেদন নামঞ্জুর পূর্বক জামিন মঞ্জুরের আবেদন করা হোক। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত উভয় আবেদন নামঞ্জুর করে দুই নেতাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আরওসিএমএম কোর্টকে মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ হাইকোর্টের গত ২৮ অক্টোবর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় পরদিন মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে আদালতে হাজির করা হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রশিদুল আলম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।  পরে ২২ নভেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন সেশন জজ আদালত আবারও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। ৭ ডিসেম্বর তৃতীয়বারের মতো তার জামিন আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। গত ৩ নভেম্বর গুলশান এলাকা থেকে আমীর খসরুকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে কনস্টেবল নিহতের ঘটনায় করা মামলায় তাকে ছয় দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। আরওমির্জা ফখরুলকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, হাইকোর্টের রুল অপরদিকে মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরুর আইনজীবী জয়নুল আবেদীন মেছবাহ দুই নেতার জামিন আবেদন করেন। জামিন শুনানির আগে মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরুকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবী মহসিন মিয়া আদালতকে বলেন, মির্জা ফখরুল একজন বয়স্ক মানুষ, তিনি হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তাকে এই মামলায় অযথা হয়রানির জন্য জড়ানো হয়েছে। তিনি নির্দেশদাতাও নন এবং ঘটনাস্থলেও ছিলেন না। তাই তার বয়স, রাজনৈতিক পদমর্যাদা এবং অসুস্থতা বিবেচনা করে রিমান্ডের আবেদন নামঞ্জুর পূর্বক জামিন মঞ্জুরের আবেদন করা হোক। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত উভয় আবেদন নামঞ্জুর করে দুই নেতাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আরওসিএমএম কোর্টকে মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ হাইকোর্টের গত ২৮ অক্টোবর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় পরদিন মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে আদালতে হাজির করা হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রশিদুল আলম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।  পরে ২২ নভেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন সেশন জজ আদালত আবারও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। ৭ ডিসেম্বর তৃতীয়বারের মতো তার জামিন আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। গত ৩ নভেম্বর গুলশান এলাকা থেকে আমীর খসরুকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে কনস্টেবল নিহতের ঘটনায় করা মামলায় তাকে ছয় দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। আরওমির্জা ফখরুলকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, হাইকোর্টের রুল গত ২৮ অক্টোবর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় পরদিন মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে আদালতে হাজির করা হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রশিদুল আলম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। পরে ২২ নভেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন সেশন জজ আদালত আবারও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। ৭ ডিসেম্বর তৃতীয়বারের মতো তার জামিন আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। গত ৩ নভেম্বর গুলশান এলাকা থেকে আমীর খসরুকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে কনস্টেবল নিহতের ঘটনায় করা মামলায় তাকে ছয় দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। আরওমির্জা ফখরুলকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, হাইকোর্টের রুল
পল্টন থানায় ও পুলিশের ওপর হামলা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে রিমান্ডে নিতে পুলিশের আবেদন এবং তাদের আইনজীবীদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
রিমান্ড শুনানির জন্য আদালতে ফখরুল ও খসরু
পল্টন থানায় ও পুলিশের ওপর হামলা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুর ১টার দিকে তাদের ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে হাজির করা হয়। পল্টন থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুমিত কুমার সাহার শনিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছেন। অপরদিকে মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরুর আইনজীবী জয়নুল আবেদীন মেছবাহ দুই নেতার জামিন আবেদন করেছেন। দুপুর দুইটার দিকে আদালত সূত্র জানায়, অল্প সময়ের মধ্যে শুনানি শুরু হবে।
পল্টন থানায় ও পুলিশের ওপর হামলা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
‘বিএনপি নেতাকর্মীদের সাজানো মামলায় জেলে রাখার গোমর ফাঁস করেছেন কৃষিমন্ত্রী’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের মিথ্যা সাজানো মামলায় জেলে পুরে এবং বাড়ি-ঘর ছাড়া করে তাড়িয়ে বেড়ানোর গোমর ফাঁস করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক। আজ সোমবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। রিজভী বলেন, 'একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, সিট ভাগাভাগির উদ্ভট তামাশার নির্বাচনকে নির্বিঘ্ন ও কণ্টকমুক্ত করার জন্যই বিএনপির ২০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে জেলে রাখা হয়েছে। তিনি বলেছেন যে, "আমরা চিন্তাভাবনা করেই এ কাজ করেছি। তাদের জেলে না ভরলে দেশ অচল হয়ে যেত। হরতালের দিন গাড়ি চলত না"।' আরওসবাইকে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাবেও রাজি হয়নি বিএনপি: চ্যানেল ২৪কে কৃষিমন্ত্রী 'এতক্ষণে অরিন্দম কহিলা বিষাদের মতো কৃষিমন্ত্রীর এই হরষের স্বীকারোক্তি প্রমাণ করে, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে হামলা করে পুলিশি তাণ্ডব-হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে চলমান যত সহিংসতা, মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার, হত্যা, বিএনপিসহ বিরোধী দলের বাড়িঘরে হামলা-তল্লাশি, ভাঙচুর-গৃহছাড়া-আটক বাণিজ্য সবকিছু শেখ হাসিনার পূর্ব পরিকল্পিত,' যোগ করেন তিনি। বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, 'শেষ পর্যন্ত এই প্রভাবশালী মন্ত্রী হাটে হাঁড়ি ভেঙে স্বীকার করলেন যে, দেশের আইন-আদালত, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন-কোর্ট কাচারি-বিচার-আচার সবকিছুই আওয়ামী মাফিয়া সরকারের হাতে বন্দী। বিচার ব্যবস্থা আর আওয়ামী লীগ একাকার হয়ে গেছে, পৃথক কোনো সত্ত্বা নেই।' 'বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দেড় লাখ মামলা আর অর্ধকোটি আসামি করা হয়েছে' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'কারাগারে নেতাকর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে সরকারের ব্লুপ্রিন্টে। বিনা কারণে নির্বিচারে বিএনপিসহ আন্দোলনরত দলগুলোর নেতাকর্মীদের কারাগারে আটক ও নির্যাতন, ইচ্ছামাফিক জেল ও জামিন বিচার বিভাগের অস্তিত্বকেই বিলীন করে দিয়েছে।' আরওমৃত ব্যক্তিকে ‘দৌড়ে পালাতে’ দেখেছে পুলিশ 'বিচার বিভাগ আইনের গতিতে নয়, চলছে গণভবনের গতিতে। স্বাধীন বিচার বিভাগ ও আইনের শাসনের আওয়ামী নমুনা কৃষিমন্ত্রীর কথায় স্পষ্ট হয়েছে। নির্বিঘ্নে নির্বাচন করতে পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশে ২০ হাজার নির্দোষ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শেখ হাসিনা চাইলে গ্রেপ্তারকৃতদের এক রাতেই ছেড়ে দিতে পারেন। ২০ হাজার নিরপরাধ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা এবং সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করলে এক রাতেই মুক্তি দেওয়া কোনো গণতান্ত্রিক দেশে, কোনো আইনের শাসনের দেশে এমনকি ডিকটেটর শাসিত অনেক দেশেও সম্ভব নয়,' যোগ করেন তিনি। 'বর্তমান আওয়ামী মাফিয়া সরকার এক অদ্ভুত স্বৈরতান্ত্রিক এবং একনায়কতান্ত্রিক সরকার। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভাষায় এই সরকারকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করতে হবে,' মন্তব্য করেন তিনি। রিজভী বলেন, 'শেখ হাসিনা আজীবন ক্ষমতায় থাকার লিপ্সায় চারবারের প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিনা অপরাধে ফরমায়েশি রায়ে কারারুদ্ধ করে রেখে বিষ প্রয়োগে হত্যার চেষ্টা করছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হচ্ছে। সবকিছুর হিসাব রাখছে দেশের জনগণ। এই নজিরবিহীন অবিচারের বিচার একদিন হবেই হবে।' আরওকৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য ব্যক্তিগত, বিএনপিকে আমরা কোনো প্রস্তাব দেইনি: কাদের তিনি আরও বলেন, 'ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিক ও লেখক এম জে আকবর বাংলাদেশে এসে গতকাল এক সেমিনার শেষে সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে স্তুতি আর প্রশংসার বন্যায় ভাসিয়ে দিয়েছেন। তার বক্তৃতা শুনে তার সম্পর্কে যারা অবগত তারা রীতিমতো বিস্মিত-হতবাক হয়েছেন। এম জে আকবরের মতো একজন প্রাজ্ঞ সাংবাদিক ও রাজনীতিক কি করে সবকিছু জেনেশুনেও একনায়কতন্ত্রের পক্ষে, ১৮ কোটি বাংলাদেশির বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে কথা বলেন। জনসমর্থনহীন শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকা আপনাদের কী স্বার্থ নিশ্চিত করে?' 'তার মন্তব্য বাংলাদেশের জনগণকে অবজ্ঞা করার শামিল। ভারত কি তাহলে বাংলাদেশের জনগণকে উপেক্ষা করে শুধু আওয়ামী লীগকেই বন্ধুত্বের বন্ধনে আঁকড়ে রাখতে চায়? এম জে আকবরের মন্তব্য কর্তৃত্বসুলভ ও বাংলাদেশের জনগণের সার্বভৌম ইচ্ছাকে অসম্মান করা। বাংলাদেশ কোনো স্যাটেলাইট স্টেট নয়। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ,' বলেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, 'আমরা তো ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলাই না। বাংলাদেশি নাগরিকরা অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সমমর্যাদার ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়ায় বিশ্বাস করে।' 'এতক্ষণে অরিন্দম কহিলা বিষাদের মতো কৃষিমন্ত্রীর এই হরষের স্বীকারোক্তি প্রমাণ করে, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে হামলা করে পুলিশি তাণ্ডব-হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে চলমান যত সহিংসতা, মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার, হত্যা, বিএনপিসহ বিরোধী দলের বাড়িঘরে হামলা-তল্লাশি, ভাঙচুর-গৃহছাড়া-আটক বাণিজ্য সবকিছু শেখ হাসিনার পূর্ব পরিকল্পিত,' যোগ করেন তিনি। বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, 'শেষ পর্যন্ত এই প্রভাবশালী মন্ত্রী হাটে হাঁড়ি ভেঙে স্বীকার করলেন যে, দেশের আইন-আদালত, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন-কোর্ট কাচারি-বিচার-আচার সবকিছুই আওয়ামী মাফিয়া সরকারের হাতে বন্দী। বিচার ব্যবস্থা আর আওয়ামী লীগ একাকার হয়ে গেছে, পৃথক কোনো সত্ত্বা নেই।' 'বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দেড় লাখ মামলা আর অর্ধকোটি আসামি করা হয়েছে' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'কারাগারে নেতাকর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে সরকারের ব্লুপ্রিন্টে। বিনা কারণে নির্বিচারে বিএনপিসহ আন্দোলনরত দলগুলোর নেতাকর্মীদের কারাগারে আটক ও নির্যাতন, ইচ্ছামাফিক জেল ও জামিন বিচার বিভাগের অস্তিত্বকেই বিলীন করে দিয়েছে।' 'বিচার বিভাগ আইনের গতিতে নয়, চলছে গণভবনের গতিতে। স্বাধীন বিচার বিভাগ ও আইনের শাসনের আওয়ামী নমুনা কৃষিমন্ত্রীর কথায় স্পষ্ট হয়েছে। নির্বিঘ্নে নির্বাচন করতে পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশে ২০ হাজার নির্দোষ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শেখ হাসিনা চাইলে গ্রেপ্তারকৃতদের এক রাতেই ছেড়ে দিতে পারেন। ২০ হাজার নিরপরাধ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা এবং সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করলে এক রাতেই মুক্তি দেওয়া কোনো গণতান্ত্রিক দেশে, কোনো আইনের শাসনের দেশে এমনকি ডিকটেটর শাসিত অনেক দেশেও সম্ভব নয়,' যোগ করেন তিনি। রিজভী বলেন, 'শেখ হাসিনা আজীবন ক্ষমতায় থাকার লিপ্সায় চারবারের প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিনা অপরাধে ফরমায়েশি রায়ে কারারুদ্ধ করে রেখে বিষ প্রয়োগে হত্যার চেষ্টা করছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হচ্ছে। সবকিছুর হিসাব রাখছে দেশের জনগণ। এই নজিরবিহীন অবিচারের বিচার একদিন হবেই হবে।' আরওকৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য ব্যক্তিগত, বিএনপিকে আমরা কোনো প্রস্তাব দেইনি: কাদের তিনি আরও বলেন, 'ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিক ও লেখক এম জে আকবর বাংলাদেশে এসে গতকাল এক সেমিনার শেষে সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে স্তুতি আর প্রশংসার বন্যায় ভাসিয়ে দিয়েছেন। তার বক্তৃতা শুনে তার সম্পর্কে যারা অবগত তারা রীতিমতো বিস্মিত-হতবাক হয়েছেন। এম জে আকবরের মতো একজন প্রাজ্ঞ সাংবাদিক ও রাজনীতিক কি করে সবকিছু জেনেশুনেও একনায়কতন্ত্রের পক্ষে, ১৮ কোটি বাংলাদেশির বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে কথা বলেন। জনসমর্থনহীন শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকা আপনাদের কী স্বার্থ নিশ্চিত করে?' 'তার মন্তব্য বাংলাদেশের জনগণকে অবজ্ঞা করার শামিল। ভারত কি তাহলে বাংলাদেশের জনগণকে উপেক্ষা করে শুধু আওয়ামী লীগকেই বন্ধুত্বের বন্ধনে আঁকড়ে রাখতে চায়? এম জে আকবরের মন্তব্য কর্তৃত্বসুলভ ও বাংলাদেশের জনগণের সার্বভৌম ইচ্ছাকে অসম্মান করা। বাংলাদেশ কোনো স্যাটেলাইট স্টেট নয়। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ,' বলেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, 'আমরা তো ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলাই না। বাংলাদেশি নাগরিকরা অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সমমর্যাদার ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়ায় বিশ্বাস করে।' তিনি আরও বলেন, 'ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিক ও লেখক এম জে আকবর বাংলাদেশে এসে গতকাল এক সেমিনার শেষে সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে স্তুতি আর প্রশংসার বন্যায় ভাসিয়ে দিয়েছেন। তার বক্তৃতা শুনে তার সম্পর্কে যারা অবগত তারা রীতিমতো বিস্মিত-হতবাক হয়েছেন। এম জে আকবরের মতো একজন প্রাজ্ঞ সাংবাদিক ও রাজনীতিক কি করে সবকিছু জেনেশুনেও একনায়কতন্ত্রের পক্ষে, ১৮ কোটি বাংলাদেশির বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে কথা বলেন। জনসমর্থনহীন শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকা আপনাদের কী স্বার্থ নিশ্চিত করে?' 'তার মন্তব্য বাংলাদেশের জনগণকে অবজ্ঞা করার শামিল। ভারত কি তাহলে বাংলাদেশের জনগণকে উপেক্ষা করে শুধু আওয়ামী লীগকেই বন্ধুত্বের বন্ধনে আঁকড়ে রাখতে চায়? এম জে আকবরের মন্তব্য কর্তৃত্বসুলভ ও বাংলাদেশের জনগণের সার্বভৌম ইচ্ছাকে অসম্মান করা। বাংলাদেশ কোনো স্যাটেলাইট স্টেট নয়। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ,' বলেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, 'আমরা তো ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলাই না। বাংলাদেশি নাগরিকরা অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সমমর্যাদার ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়ায় বিশ্বাস করে।'
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের মিথ্যা সাজানো মামলায় জেলে পুরে এবং বাড়ি-ঘর ছাড়া করে তাড়িয়ে বেড়ানোর গোমর ফাঁস করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক।
কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য ব্যক্তিগত, বিএনপিকে আমরা কোনো প্রস্তাব দেইনি: কাদের
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নেওয়া উদ্যোগ প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী যা বলেছেন, সেটি তার ব্যক্তিগত মত বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। একজন গণমাধ্যমকর্মী জানতে চান, একটি বেসরকারি টেলিভিশনে সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বলেছেন, বিএনপিকে নির্বাচনে আসার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। যদি আসতো তারা, তাহলে রাতারাতি ২০ হাজার নেতাকর্মীকে ছেড়ে দেওয়া হতো। এই ব্যাপারটা বিচারের জায়গা থেকে প্রশ্নবিদ্ধ হয় কি না—জবাবে কাদের বলেন, 'কৃষিমন্ত্রীর নামে খবরটি ইন্টারভিউতে প্রকাশ করেছে। তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটা তার ব্যক্তিগত মতামত।' ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আওয়ামী লীগ কোনো দেউলিয়া দল নয়। আওয়ামী লীগ দলীয় নিয়ম-নীতি ভঙ্গ করে; গণতন্ত্রের প্রতি আওয়ামী লীগের যে কমিটমেন্ট, সেটা বিনষ্ট করে এ ধরনের উদ্ভট প্রস্তাব বিএনপি বা আর কাউকে দেবে, এটা কখনো সঠিক হতে পারে না।' তিনি আরও বলেন, 'এ ধরনের কোনো প্রস্তাব আমাদের সরকারও দেয়নি, আমাদের দলও দেয়নি। আমরা দলীয়ভাবে এ ধরনের প্রস্তাব দেইনি। আর বিএনপির ২০ হাজার নেতাকর্মী জেলে আছে এটাও তো আমরা স্বীকার করি না! 'তাদের জেলে আছে কত সে হিসাবটা আমি মির্জা ফখরুলের কাছে অনেকবার চেয়েছি। তাদের জেলে কত আছে সেই তালিকাটা তারা বের করুক। এ রকম উদ্ভট ২০ হাজার, একটা সংখ্যা বলে দিলো—সেটা সবাই বিশ্বাস করবে, এমন তো নয়! এটা বিশ্বাস করার তো কোনো কারণ নেই। এত লোক গ্রেপ্তারও হয়নি,' বলেন কাদের। তিনি বলেন, 'আইন ভঙ্গ করে, পুলিশকে হত্যা করে যারা জেলে আছে, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা করে, কোর্টের এজলাসে হামলা করে, পুলিশ হাসপাতালে হামলা করে, প্রকাশ্য দিবালোকে একজন পুলিশকে পিটিয়ে, তার মাথা ফেটে গেছে, সেখানে পর্যন্ত তাকে পেটানো হচ্ছিল; বারবার! লাশ হয়ে যাওয়ার পরও তাকে আঘাত করা হয়েছে। এত অমানবিক, এত নিষ্ঠুরতা যারা ঘটিয়েছে তাদের তো আইনের আওতায় আসতেই হবে। এখানে নির্বাচনে কাউকে আনার জন্য অপরাধকে ক্ষমা করব—এ দল আওয়ামী লীগ না।' আপনি বলছেন যাদের আটক করা হয়েছে তাদের বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, মামলার কারণে আটক করা হয়েছে কিন্তু তিনি (কৃষিমন্ত্রী) বলেছেন, সুচিন্তিতভাবে আমরা তাদের আটক করেছি; এ ব্যাপারে গণমাধ্যমকর্মী জানতে চাইলে কাদের বলেন, 'আমি বললাম, উনার সমুদয় বক্তব্য উনার ব্যক্তিগত।' ব্যক্তিগত বক্তব্যের কারণে দল কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'দল ব্যবস্থা নেবে কি না এটা দলের ব্যাপার। কীভাবে নেবে সেটাও দলের ব্যাপার।'
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নেওয়া উদ্যোগ প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী যা বলেছেন, সেটি তার ব্যক্তিগত মত বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সিএমএম কোর্টকে মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ হাইকোর্টের
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন আবেদন গ্রহণ এবং আবেদনের শুনানি ও নিষ্পত্তি করতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতকে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়া, মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদন গ্রহণ ও শুনানি করতে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের অস্বীকৃতি জানানোর সিদ্ধান্তকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে একটি রুলও জারি করেছেন হাইকোর্ট। একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ আদেশ ও রুল জারি করেন। রাজনৈতিক সহিংসতার অভিযোগে করা পৃথক ৯টি মামলায় মির্জা ফখরুলের ৯টি জামিন আবেদন শুনানি করতে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের অস্বীকৃতির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এ রিট আবেদন করা হয়েছিল। রিট আবেদনকারীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় শুনানি করেন। মির্জা ফখরুলের স্ত্রী রাহাত আরা বেগম গত ১৪ ডিসেম্বর আইনজীবীদের মাধ্যমে হাইকোর্টে রিট আবেদন জমা দেন। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ঢাকার একটি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বিভিন্ন তারিখে শুনানির জন্য মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদন গ্রহণ করতে অস্বীকার করে মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করেছে। রিট আবেদনকারীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট সগীর হোসেন লিওন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আবেদনে হাইকোর্টের কাছে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে জামিন আবেদন গ্রহণ ও নিষ্পত্তির জন্য শুনানির নির্দেশ চাওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, আইনজীবীরা গত ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর শুনানির জন্য ওই আদালতে জামিন আবেদন জমা দেওয়ার পরও সংশ্লিষ্ট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তা নাকচ করে দেন। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় পল্টন ও রমনা থানায় এ নয়টি মামলা করা হয়। মামলায় পুলিশ কনস্টেবলকে হত্যা, রাস্তায় বেআইনি জমায়েত, যানবাহন ভাঙচুর, সংঘর্ষ, পুলিশের অস্ত্র ছিনতাই, সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি, পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা এবং দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। ২৮ অক্টোবর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় গত ২৯ অক্টোবর ফখরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেদিনই আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন আবেদন গ্রহণ এবং আবেদনের শুনানি ও নিষ্পত্তি করতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতকে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
‘ট্রাক’ খাদে পড়ে যাবে বললে আমারই প্রচার হবে: মাহিয়া মাহি
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শত ভাগ আশাবাদী বলে জানিয়েছেন ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রাজশাহী-১ আসনে প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে আজ সোমবার সকালে রাজশাহীতে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তার নির্বাচনী মার্কা 'ট্রাক'। মাহি বলেন, 'আমাদের যারা নানি-দাদিরা আছে তারা ট্রাকটা দেখলে চিনতে পারবেন। আমি জানি আজকের পর থেকে এই আসনে সবাই মোটামুটি যারা আমার বিরুদ্ধে আছে সবাই আমাকে পচানোর চেষ্টা করবেন যে, ট্রাক খাদে পড়ে যাবে; চাকা পাংচার হয়ে যাবে—এ রকম যখন আমাকে পচানোর চেষ্টা করা হবে, তখন তারা আসলে আমার প্রচারণা বেশি বেশি করবে। মানুষের মাথায় ঢুকিয়ে দেবে যে, ট্রাকটা আমার প্রতীক। আমার কাছে মনে হচ্ছে, ট্রাকটা আমার কাছে বেস্ট।' জয়ের ব্যাপারে শত ভাগ আশাবাদী জানিয়ে মাহি বলেন, 'আমার এলাকার মানুষ আসলে এ রকম করে বসে আছে ভোট দেওয়ার জন্য; তারা কখন ভোট দেবে এবং তারা সেবক আনবে। 'এখানে পরিবর্তন তারা চায়। তারা চায় না তাদের ধামকি দেওয়া হোক। তারা চায় বঙ্গবন্ধুর মতো একজন বন্ধুসুলভ নেতা। সে সুযোগ পাবে তার পাশে ভাত খাওয়ার মতো, তাকে ধরার সুযোগ পাবে, কোনো বিপদ হলে তার কাছে যাওয়ার সুযোগ পাবে,' যোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, 'আমাদের এখন যারা নেতারা আছেন, ইনারা তো অনেক বড়লোক আছেন, অনেকে অনেক প্রভাবশালী। তাদের ড্রইং রুম পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ আসলে আমার গ্রামবাসী পায় না। আমি তাদের কাছাকাছি থাকব—তারা এটা জানে। তার জন্য তারা আমাকে ভোট দেবে ইনশাল্লাহ এবং আমি জয়ী হবো।' আপনি বললেন এখানে অনেকে প্রভাবশালী, তাহলে আপনি কীভাবে জয়ী হবেন জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের মাহি বলেন, 'জনগণের চেয়ে প্রভাবশালী কেউ হতে পারে না।' কী বলে ভোট চাইবেন, কী কী প্রতিশ্রুতি দেবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'সারা বাংলাদেশে যেমন গণতন্ত্র আছে, এই এলাকায় মানুষের কোনো স্বাধীনতা নেই। কথা বলার স্বাধীনতা নেই। তাদের এলাকায় যে একটা রাস্তা নেই, যে দাঁড়িয়ে বলবে আমার এলাকায় একটা রাস্তা করে দেন—সেটা বললে তাকে অপমানিত হতে হয়। মানুষের কাছে ধমক খেতে হয়। আমার মনে হয় যে, তারা এ রকমটা চায় না।' নির্বাচনী মাঠ কেমন দেখছেন জানতে চাইলে মাহি বলেন, 'পরিবেশ আজকে থেকে বোঝা যাবে। আজকে থেকে প্রচারণা শুরু হবে। আমরা যখন প্রচারণা চালাব তখন দেখব কত রকমের বাধা আসে। তখন আসলে বুঝতে পারব।' বাধা কেন আসবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'বাধা তো আসবেই! কেউ কি চাইবে যে, আসন ছেড়ে দেই বা অন্য কেউ চলে আসুক। এটা তো কেউ আসলে চাইবে না। বাধা তো দেবেই।' আপনি কোনো বাড়তি সুবিধা পাবেন কি না প্রশ্ন করা হলে মাহি বলেন, 'আপনি যদি একটা অজ পাড়াগ্রামে যান, সেখানে তো মানুষ আপনারাকে চিনবে না কিন্তু আমি যদি যাই, সেখানে আমাকে তারা চিনবে। কারণ এখন ডিজিটাল যুগ। প্রত্যেকের ঘরে মোবাইল আছে, ইন্টারনেট আছে। সেই ইন্টারনেটে তারা আমার একটা হলেও গান দেখেছে। তারা আমাকে চেনে। আমি যখন তাদের কাছে যাব সেই মা-বোনদের কাছে, তারা আমাকে না জড়িয়ে ধরে। এইটাই আমার অ্যাডভানটেজ।' আপনি নির্বাচিত হলে কৃষকদের জন্য কী করবেন—গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে মাহি বলেন, 'এই যে ডিপের (ডিপ টিউবওয়েল) একটা ব্যবস্থা, এটা স্বজনপ্রীতি আমি করব না। যাদের যেখানে দরকার সে অনুযায়ী আমি ব্যবস্থা করব। কৃষকরা যাতে সর্বোচ্চ সুবিধা নিয়ে কৃষিকাজ চালাতে পারে সেটার ব্যবস্থা করব। 'নারীরা যাতে ঘরে বসে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হতে পারে। তরুণরা যাতে শুধুমাত্র চাকরির পেছনে না ছোটে, জজ-ব্যারিস্টার শুধু না হতে চায়; তারা যাতে উদ্যোক্তা হয় সেটা নিয়ে কাজ করব,' বলেন তিনি। রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনকে অনুসরণ করে রাজশাহী-১ আসন সাজাতে চান বলেও এ সময় জানান মাহি। একজন গণমাধ্যমকর্মী প্রশ্ন করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কী ধরনের অনুপ্রেরণা দিয়েছেন; জবাবে মাহি বলেন, 'উনি প্রেরণা দিয়েছেন যে, এখানে শত ভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। এটার কোনো দ্বিমত নেই। এখানে কোনো নাশকতা হলে, যদি দলীয় কেউ নাশকতা করে সে ক্ষেত্রে তারা অ্যাকশন নেবেন।' এ রকম কোনো আশঙ্কা আছে কি না জানতে চাইলে মাহি বলেন, 'একদমই নেই। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, যে যার মতো নির্বাচন করবে।'
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শত ভাগ আশাবাদী বলে জানিয়েছেন ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি।
৩০০ আসন যেভাবে ভাগ হলো আ. লীগ ও শরিক দল এবং জাতীয় পার্টির মধ্যে
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ২৯৮টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ—এর মধ্যে পাঁচজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। তারা হলেন—ফরিদপুর-৩ আসনের শামীম হক, বরিশাল-৪ আসনের শাম্মী আহমেদ, ময়মনসিংহ-৯ আসনের আব্দুস সালাম, যশোর-৪ আসনের এনামুল হক বাবুল ও কক্সবাজার-১ আসনের সালাহ উদ্দীন আহমদ। শাম্মী আহমেদ ও শামীম হক তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট করেছেন। আজ সোমবার এই রিট শুনানি হতে পারে। গতকাল ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এ দিন পর্যন্ত জাতীয় পার্টি ও শরিক দলগুলোর জন্য ৩২টি আসন ছাড় দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এসব আসনের মধ্যে দুইটিতে প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। বাকি ৩০টি থেকে প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিয়েছে। সেই হিসাবে জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৬৩, তাদের শরিক দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি দুই, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-ইনু) তিন, জাতীয় পার্টি (জেপি-মঞ্জু) এক ও জাতীয় পার্টি ২৬টি আসনে প্রতিদ্বন্দিতা করতে যাচ্ছে। হাইকোর্টের আদেশে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থীর মধ্যে এক বা একাধিক জন মনোনয়ন ফিরে পেলে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী সংখ্যা হতে পারে ২৬৪ বা ২৬৫ জন। ওয়ার্কার্স পার্টির জন্য দুইটি আসন ছাড় দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এই দুই আসন ও প্রার্থী হচ্ছেন: বরিশাল-২—রাশেদ খান মেনন রাজশাহী-২—ফজলে হোসেন বাদশা জাসদের জন্য তিনটি আসন ছাড় দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এই তিন আসন ও প্রার্থী হচ্ছেন: কুষ্টিয়া-২—হাসানুল হক ইনু বগুড়া-৪—এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন লক্ষ্মীপুর-৪—মোশাররফ হোসেন জাতীয় পার্টির (জেপি-মঞ্জু) জন্য একটি আসন ছেড়েছে ক্ষমতাসীন দল। সেটি হচ্ছে পিরোজপুর-২। এই আসনে দলটির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু প্রার্থী হবেন। একাদশ জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির জন্য দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে মোট ২৬টি আসন ছাড় দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এসব আসন ও আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হচ্ছেন: ঠাকুরগাঁও-৩—হাফিজ উদ্দিন আহমেদ নীলফামারী-৩—মেজর (অব.) রানা মো. সোহেল নীলফামারী-৪—আহসান আদেলুর রহমান রংপুর-১—এইচ এম শাহরিয়ার আসিফ রংপুর-৩—গোলাম মোহাম্মদ কাদের কুড়িগ্রাম-১—একেএম. মোস্তাফিজুর রহমান কুড়িগ্রাম-২—পনির উদ্দিন আহমেদ গাইবান্ধা-১—ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী গাইবান্ধা-২—আব্দুর রশীদ সরকার বগুড়া-২—শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ বগুড়া-৩—অ্যাড. নুরুল ইসলাম তালুকদার সাতক্ষীরা-২—মো. আশরাফুজ্জামান আশু পটুয়াখালী-১—এ.বি.এম. রুহুল আমিন হাওলাদার বরিশাল-৩—গোলাম কিবরিয়া টিপু পিরোজপুর-৩—মো. মাশরেকুল আজম রবি ময়মনসিংহ-৫—সালাহউদ্দিন আহমেদ মুক্তি ময়মনসিংহ-৮—ফখরুল ইমাম কিশোরগঞ্জ-৩—অ্যাড. মুজিবুল হক চুন্নু মানিকগঞ্জ-১—জহিরুল আলম রুবেল মো. হাসান সাঈদ ঢাকা-১৮—শেরীফা কাদের হবিগঞ্জ-১—এম.এ. মুনিম চৌধুরী বাবু ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২—আব্দুল হামিদ ফেনী-৩—লে. জে. (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম-৫—আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চট্টগ্রাম-৮—সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী নারায়ণগঞ্জ-৫—এ কে এম সেলিম ওসমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন: পঞ্চগড়-১—নাইমুজ্জমান মুক্তা পঞ্চগড়-২—নুরুল ইসলাম সুজন ঠাকুরগাঁও-১—রমেশ চন্দ্র সেন ঠাকুরগাঁও-২—মাজহারুল ইসলাম দিনাজপুর-১—মনোরঞ্জন শীল গোপাল দিনাজপুর-২—খালিদ মাহমুদ চৌধুরী দিনাজপুর-৩—ইকবালুর রহিম দিনাজপুর-৪—আবুল হাসান মাহমুদ আলী দিনাজপুর-৫—মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার দিনাজপুর-৬—শিবলী সাদিক নীলফামারী-১—আফতাব উদ্দিন সরকার নীলফামারী-২—আসাদুজ্জামান নূর লালমনিরহাট-১—মোতাহার হোসেন লালমনিরহাট-২—নুরুজ্জামান আহমেদ লালমনিরহাট–৩—মো. মতিয়ার রহমান রংপুর-২—আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী রংপুর-৪—টিপু মুনশি রংপুর-৫—রাশেক রহমান রংপুর-৬—শিরীন শারমিন চৌধুরী কুড়িগ্রাম-৩—সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে কুড়িগ্রাম-৪—মো. বিপ্লব হাসান গাইবান্ধা-৩—উম্মে কুলসুম স্মৃতি গাইবান্ধা-৪—মো. আবুল কালাম আজাদ গাইবান্ধা-৫—মাহমুদ হাসান জয়পুরহাট-১—সামছুল আলম দুদু জয়পুরহাট-২—আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বগুড়া-১—সাহাদারা মান্নান বগুড়া-৫—মো. মজিবর রহমান (মজনু) বগুড়া-৬—রাগেবুল আহসান রিপু বগুড়া-৭—মো. মোস্তফা আলম চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১—ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২—মু. জিয়াউর রহমান চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩—মো. আব্দুল ওদুদ নওগাঁ-১—সাধন চন্দ্র মজুমদার নওগাঁ-২—মো. শহীদুজ্জামান সরকার নওগাঁ-৩—সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্ত্তী নওগাঁ-৪—মো. নাহিদ মোর্শেদ নওগাঁ-৫—নিজাম উদ্দিন জলিল (জন) নওগাঁ-৬—মো. আনোয়ার হোসেন হেলাল রাজশাহী-১—ওমর ফারুক চৌধুরী রাজশাহী-৩—মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদ রাজশাহী-৪—মো. আবুল কালাম আজাদ রাজশাহী-৫—মো. আব্দুল ওয়াদুদ রাজশাহী-৬—মো. শাহরিয়ার আলম নাটোর-১—মো. শহিদুল ইসলাম (বকুল) নাটোর-২—শফিকুল ইসলাম শিমুল নাটোর-৩—জুনাইদ আহমেদ পলক নাটোর-৪—মো. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী সিরাজগঞ্জ-১—তানভীর শাকিল জয় সিরাজগঞ্জ-২—মোছা. জান্নাত আরা হেনরী সিরাজগঞ্জ-৩—মো. আব্দুল আজিজ সিরাজগঞ্জ-৪—মো. শফিকুল ইসলাম সিরাজগঞ্জ-৫—আব্দুল মমিন মন্ডল সিরাজগঞ্জ-৬—চয়ন ইসলাম পাবনা-১—মো. শামসুল হক টুকু পাবনা-২—আহমেদ ফিরোজ কবির পাবনা-৩—মো. মকবুল হোসেন পাবনা-৪—গালিবুর রহমান শরীফ পাবনা-৫—গোলাম ফারুক খন্দ. প্রিন্স মেহেরপুর-১—ফরহাদ হোসেন মেহেরপুর-২—আবু সালেহ মোহাম্মদ নাজমুল হক কুষ্টিয়া-১—আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান কুষ্টিয়া-৩—মো. মাহবুবউল আলম হানিফ কুষ্টিয়া-৪—সেলিম আলতাফ জর্জ চুয়াডাঙ্গা-১—সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার (ছেলুন) চুয়াডাঙ্গা-২—মো. আলী আজগার ঝিনাইদহ-১—মো. আব্দুল হাই ঝিনাইদহ-২—তাহজীব আলম সিদ্দিকী ঝিনাইদহ-৩—মো. সালাহ উদ্দিন মিয়াজী ঝিনাইদহ-৪—মো. আনোয়ারুল আজীম (আনার) যশোর-১—শেখ আফিল উদ্দিন যশোর-২—মো. তৌহিদুজজামান যশোর-৩—কাজী নাবিল আহমেদ যশোর-৫—স্বপন ভট্টাচার্য্য যশোর-৬—শাহীন চাকলাদার মাগুরা-১—সাকিব আল হাসান মাগুরা-২—শ্রী বীরেন শিকদার নড়াইল-১—বি, এম কবিরুল হক নড়াইল-২—মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা বাগেরহাট-১—শেখ হেলাল উদ্দীন বাগেরহাট-২—শেখ তন্ময় বাগেরহাট-৩—হাবিবুন নাহার বাগেরহাট-৪—এইচ, এম, বদিউজ্জামান সোহাগ খুলনা-১—ননী গোপাল মন্ডল খুলনা-২—সেখ সালাহউদ্দিন খুলনা-৩—এস এম কামাল হোসেন খুলনা-৪—আব্দুস সালাম মূর্শেদী খুলনা-৫—নারায়ন চন্দ্র চন্দ খুলনা-৬—মো. রশীদুজ্জামান সাতক্ষীরা-১—ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন সাতক্ষীরা-৩—আ, ফ, ম রুহুল হক সাতক্ষীরা-৪—এস. এম. আতাউল হক বরগুনা-১—ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভু বরগুনা-২—সুলতানা নাদিরা পটুয়াখালী-২—আ, স, ম, ফিরোজ পটুয়াখালী-৩—এস. এম শাহজাদা পটুয়াখালী-৪—মো. মহিববুর রহমান ভোলা-১—তোফায়েল আহমেদ ভোলা-২—আলী আজম ভোলা-৩—নুরন্নবী চৌধুরী ভোলা-৪—আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বরিশাল-১—আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ বরিশাল-৫—জাহিদ ফারুক বরিশাল-৬—আবদুল হাফিজ মল্লিক ঝালকাঠি-১—শাহজাহান ওমর ঝালকাঠি-২—আমির হোসেন আমু পিরোজপুর-১—শ. ম. রেজাউল করিম টাঙ্গাইল-১—মো. আব্দুর রাজ্জাক টাঙ্গাইল-২—ছোট মনির টাঙ্গাইল-৩—মো. কামরুল হাসান খান টাঙ্গাইল-৪—মো. মোজহারুল ইসলাম তালুকদার টাঙ্গাইল-৫—মো. মামুন-অর-রশিদ টাঙ্গাইল-৬—আহসানুল ইসলাম (টিটু) টাঙ্গাইল-৭—খান আহমেদ শুভ টাঙ্গাইল-৮—অনুপম শাহজাহান জয় জামালপুর-১—নূর মোহাম্মদ জামালপুর-২—মো. ফরিদুল হক খান জামালপুর-৩—মির্জা আজম জামালপুর-৪—মো. মাহবুবুর রহমান জামালপুর-৫—মো. আবুল কালাম আজাদ শেরপুর-১—মো. আতিউর রহমান আতিক শেরপুর-২—মতিয়া চৌধুরী শেরপুর-৩—এ, ডি, এম, শহিদুল ইসলাম ময়মনসিংহ-১—জুয়েল আরেং ময়মনসিংহ-২—শরীফ আহমেদ ময়মনসিংহ-৩—নিলুফার আনজুম ময়মনসিংহ-৪—মোহাম্মদ মোহিত উর রহমান ময়মনসিংহ-৬—মো. মোসলেম উদ্দিন ময়মনসিংহ-৭—মো. হাফেজ রুহুল আমীন মাদানী ময়মনসিংহ-১০—ফাহমী গোলন্দাজ (বাবেল) ময়মনসিংহ-১১—কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ নেত্রকোনা-১—মোশতাক আহমেদ রুহী নেত্রকোনা-২—মো. আশরাফ আলী খান খসরু নেত্রকোনা-৩—অসীম কুমার উকিল নেত্রকোনা-৪—সাজ্জাদুল হাসান নেত্রকোনা-৫—আহমদ হোসেন কিশোরগঞ্জ-১—সৈয়দা জাকিয়া নূর কিশোরগঞ্জ-২—আবদুল কাহার আকন্দ কিশোরগঞ্জ-৪—রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক কিশোরগঞ্জ-৫—মো. আফজাল হোসেন কিশোরগঞ্জ-৬—নাজমুল হাসান মানিকগঞ্জ-২—মমতাজ বেগম মানিকগঞ্জ-৩—জাহিদ মালেক মুন্সীগঞ্জ-১—মহিউদ্দিন আহমেদ মুন্সীগঞ্জ-২—সাগুফতা ইয়াসমিন মুন্সীগঞ্জ-৩—মৃনাল কান্তি দাস ঢাকা-১—সালমান ফজলুর রহমান ঢাকা-২—মো. কামরুল ইসলাম ঢাকা-৩—নসরুল হামিদ ঢাকা-৪—সানজিদা খানম ঢাকা-৫—হারুনর রশীদ মুন্না ঢাকা-৬—মোহাম্মদ সাইদ খোকন ঢাকা-৭—মোহাম্মদ সোলায়মান সেলিম ঢাকা-৮—আ, ফ, ম, বাহাউদ্দিন নাছিম ঢাকা-৯—সাবের হোসেন চৌধুরী ঢাকা-১০—ফেরদৌস আহমেদ ঢাকা-১১—মোহাম্মদ ওয়াকিল উদ্দিন ঢাকা-১২—আসাদুজ্জামান খান ঢাকা-১৩—জাহাঙ্গীর কবির নানক ঢাকা-১৪—মো. মাইনুল হোসেন খান ঢাকা-১৫—কামাল আহমেদ মজুমদার ঢাকা-১৬—মো. ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ ঢাকা-১৭—মোহাম্মদ আলী আরাফাত ঢাকা-১৯—ডা. মো. এনামুর রহমান ঢাকা-২০—বেনজীর আহমদ গাজীপুর-১—আ, ক, ম, মোজাম্মেল হক গাজীপুর-২—মো. জাহিদ আহসান রাসেল গাজীপুর-৩—রুমানা আলী গাজীপুর-৪—সিমিন হোসেন (রিমি) গাজীপুর-৫—মেহের আফরোজ নরসিংদী-১—মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম নরসিংদী-২—আনোয়ারুল আশরাফ খান নরসিংদী-৩—ফজলে রাব্বি খান নরসিংদী-৪—নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন নরসিংদী-৫—রাজি উদ্দিন আহমেদ নারায়ণগঞ্জ-১—গোলাম দস্তগীর গাজী নারায়ণগঞ্জ-২—মো. নজরুল ইসলাম বাবু নারায়ণগঞ্জ-৩—আব্দুল্লাহ-আল-কায়সার নারায়ণগঞ্জ-৪—শামীম ওসমান রাজবাড়ী-১—কাজী কেরামত আলী রাজবাড়ী-২—মো. জিল্লুল হাকিম ফরিদপুর-১—মো. আব্দুর রহমান ফরিদপুর-২—শাহদাব আকবর ফরিদপুর-৪—কাজী জাফর উল্যাহ গোপালগঞ্জ-১—মুহাম্মদ ফারুক খান গোপালগঞ্জ-২—শেখ ফজলুল করিম সেলিম গোপালগঞ্জ-৩—শেখ হাসিনা মাদারীপুর-১—নূর-ই-আলম চৌধুরী মাদারীপুর-২—শাজাহান খান মাদারীপুর-৩—মো. আবদুস সোবহান মিয়া শরীয়তপুর-১—মো. ইকবাল হোসেন শরীয়তপুর-২—এ কে এম এনামুল হক শামীম শরীয়তপুর-৩—নাহিম রাজ্জাক সুনামগঞ্জ-১—রনজিত চন্দ্র সরকার সুনামগঞ্জ-২—চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ সুনামগঞ্জ-৩—এম এ মান্নান সুনামগঞ্জ-৪—মোহম্মদ সাদিক সুনামগঞ্জ-৫—মুহিবুর রহমান মানিক সিলেট-১—এ. কে. আব্দুল মোমেন সিলেট-২—শফিকুর রহমান চৌধুরী সিলেট-৩—হাবিবুর রহমান সিলেট-৪—ইমরান আহমদ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ২৯৮টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ—এর মধ্যে পাঁচজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।
গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা না বলেই বনানী কার্যালয় ছাড়লেন জি এম কাদের
গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা না বলেই বনানীর কার্যালয় থেকে বেরিয়ে গেলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। আজ সন্ধ্যা ৬ টা ২০ মিনিটে বনানী কার্যালয় ত্যাগ করেন তিনি। এসময় গণমাধ্যমকর্মীরা তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলেই গাড়িতে উঠে পড়েন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন আজ রোববার সকাল থেকেই বনানীতে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন দলটির নেতাকর্মীরা। এর ইমধ্যে ঢাকা-১৭ আসন থেকে নিজের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন জি এম কাদের। বেলা সাড়ে তিনটার পর বনানীর কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মুজিবুল হক জানান জাতীয় পার্টি ২৮৩টি আসনে ভোটে অংশে নেবে। আজ রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার পর বনানীর কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মুজিবুল হক জানান জাতীয় পার্টি ২৮৩টি আসনে ভোটে অংশে নেবে। মুজিবুল হক বলেন, 'কোনো জোট হয়নি। আসন সমঝোতা হয়নি। তবে কিছু আসনের ক্ষেত্রে কিছু কৌশল রয়েছে।' এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ তাদের ২৫টি আসন থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয়।
গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা না বলেই বনানীর কার্যালয় থেকে বেরিয়ে গেলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। আজ সন্ধ্যা ৬ টা ২০ মিনিটে বনানী কার্যালয় ত্যাগ করেন তিনি।
বিএনপির তো মাথা নেই, শুধু একটা ধড় চলছে: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির মাথা নেই, শুধু একটা ধড় চলছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মন্তব্য করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বিএনপির চরিত্র কখনো বদলাবে না। জনগণের কল্যাণের কথা এরা চিন্তা করে না। নিজেদেরটাই শুধু ভালো বোঝে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় এসেছে অর্থসম্পদ বানানো, বিদেশে পাচার করা, এতিমের অর্থ আত্মসাৎ, এগুলোই করেছে। আর তাদের কাছ থেকে এখন বড় বড় কথা শুনতে হয়। এটাই বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য।' বিএনপির সঙ্গে সংলাপের প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'যখন ডায়ালগের জন্য ফোন করলাম, যে ধরনের আচরণ করল, আমি অবাক হলাম। এরপরেও নির্বাচন হয়ে গেল। ২০১৮ সালে আবার যখন আহ্বান করলাম, সব দলই কথা বলল, শুধু বিএনপি ছাড়া। কিন্তু তারা নির্বাচনে আসে।' 'নির্বাচন তারা করবে কীভাবে। কারণ তারা নমিনেশন দেয়, একটা আসে লন্ডন থেকে, একটা আসে পল্টন থেকে, আরেকটা আসে গুলশান থেকে। যখন লন্ডনেরটা আসে, তখন পল্টনেরটা চলে যায়, যখন পল্টনেরটা থেকে তখন গুলশানেরটা যায়। এই করে সকালে একটা নির্বাচন দেয়, বিকেলে একটা নির্বাচন দেয়। শেষকালে পল্টনও গেল, লন্ডনও গেল, গুলশানও গেল,' যোগ করেন তিনি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির কয়েকটা সিট পেয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'তাদের যারা পার্লামেন্টে সদস্য ছিল, আমরা তাদের সবরকম সুযোগ দিতাম কথা বলার। কারণ আমরা যখন বিরোধী দলে দিতাম, তখন আমাদের কথা বলতে দেওয়া হতো না। এমনকি ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ দেয়নি। আমি বিরোধী দলের নেতা হয়েও আমি কোনোদিন মাইকই পেতাম না।' প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'এখন আবার যখন নির্বাচন এসেছে, তখন তাদের নানা কথা, নির্বাচন করবে না। আসলে নির্বাচন করবে কীভাবে। ওই দলের তো মাথা নেই, শুধু একটা ধড় চলছে। সেটাও একটা গুলশান, আর একটা পল্টন থেকে। এই দুই জায়গা থেকে তারা চলছে। আর কোন কোন অন্ধকার জায়গা থেকে তারা কথা বলে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ নিয়ে প্রতিদিন হরতাল ডাকে, অবরোধ ডাকে, মানুষ পুড়িয়ে মারে।' তিনি বলেন, 'লন্ডন বসে হুকুম দেয়, আর এখান থেকে আগুন দেয়। এই আগুনের খেলা ভালো না। বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান জানাই, যারা আগুন দেয় তাদের প্রতিহত করুন।' 'বিএনপির অবরোধে তারা নিজেরাই অবরুদ্ধ হয়ে যায়' মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'খালেদা জিয়া তো বছরের পর বছর অবরুদ্ধ, কারণ ২০১৪ সালে তিনি যে অবরোধের ঘোষণা দিয়েছিল, তা এখনো তোলেনি। এখন আবার অবরোধ দিচ্ছে, হরতাল দিচ্ছে।'
বিএনপির মাথা নেই, শুধু একটা ধড় চলছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শরিকদের ৬, জাপাকে ২৬ ছাড় দিয়ে ২৬৩ আসনে আওয়ামী লীগ
জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় জোটকে আওয়ামী লীগ ৩২টি আসন ছেড়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া। আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনে কমিশনে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, 'আমরা ছয়টি আসনে আমাদের দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক মিত্র ১৪ দলের শরিক তিনটি রাজনৈতিক দলকে আমরা ছয়টি আসন দিয়েছি। সেখানে ওয়ার্কার্স পার্টির দুইটি, জাসদের তিনটি ও জেপি (মঞ্জু) একটি; মোট ছয়টি আসন আমরা ১৪ দলকে ছেড়ে দিয়েছি এবং এই ছয়টি আসনে আমরা আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।' তিনি বলেন, 'জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমরা ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আমরা বিভিন্ন ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করেছি। জাতীয় পার্টির জন্য ২৬টি আসনে আমরা আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ২৬টি আসনে আমরা আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আমরা নির্বাচন কমিশনকে জানাতে এসেছি। 'সব মিলিয়ে আমরা জাতীয় পার্টির জন্য ২৬টি ও ১৪ দলের জন্য ছয়টি, মোট ৩২টি আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী প্রত্যাহারের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত আমরা জানাতে এসেছি,' বলেন তিনি। ঢাকায় কোনো আসন ছেড়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে আসনগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।' তিনি বলেন, 'জাতীয় পার্টির জন্য যে ২৬টি আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী প্রত্যাহার করেছি, সেগুলো হচ্ছে ঠাকুরগাঁও-৩, নীলফামারী-৩, নীলফামারী-৪, রংপুর-১, রংপুর-৩, কুড়িগ্রাম-১, কুড়িগ্রাম-২, গাইবান্ধা-১, গাইবান্ধা-২, বগুড়া-২, বগুড়া-৩, সাতক্ষীরা-২, পটুয়াখালী-১, বরিশাল-৩, পিরোজপুর-৩, ময়মনসিংহ-৫, ময়মনসিংহ-৮, কিশোরগঞ্জ-৩, মানিকগঞ্জ-১, ঢাকা-১৮, হবিগঞ্জ-১, ব্রাহ্মণবাড়ি-২, ফেনী-৩, চট্টগ্রাম-৫, চট্টগ্রাম-৮ ও নারায়ণগঞ্জ-৫। '১৪ দলের জন্য আসনগুলো হচ্ছে, বগুড়া-৪, রাজশাহী-২, কুষ্টিয়া-২, বরিশাল-২, পিরোজপুর-২ ও লক্ষ্মীপুর-৪, মোট ছয়টি আসন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে,' জানান তিনি। বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, 'আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল ২৯৮টি আসনে। পাঁচ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। আমরা ছয়টি দিয়েছিল আমাদের রাজনৈতিক মিত্র ১৪ দলকে এবং জাতীয় পার্টির জন্য আমরা ছেড়েছি ২৬টি আসন। ২৬৩ আসনে নৌকার প্রার্থীরা নির্বাচন করবেন।' ১৪ দলের ছয় জন প্রার্থী নৌকা ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করবেন বলেও জানান তিনি।
জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় জোটকে আওয়ামী লীগ ৩২টি আসন ছেড়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া।
পল্টন থানায় হামলা মামলায় ফখরুল ও খসরুকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন
পল্টন থানায় ও পুলিশের ওপর হামলা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছে পুলিশ। পল্টন থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুমিত কুমার সাহা গতকাল শনিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ বিষয়ে একটি আবেদন করেন। ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ারও আবেদন করেছেন তিনি। তবে আদালত জানান, মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরুর উপস্থিতিতে সোমবার আবেদনের ওপর শুনানি হবে। বিএনপির এ দুই শীর্ষ নেতা কারাবন্দী থাকায়, আদালত কারা কর্তৃপক্ষকে শুনানির সময় তাদের হাজির করার নির্দেশ দেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২৮ অক্টোবর মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরুর নির্দেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা বিকেল ৩টার দিকে পল্টন মডেল থানার সামনে জড়ো হয়। সেখানে তারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে থানায় ও পুলিশের ওপর হামলা চালায় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ফখরুল ও আমীর খসরুসহ ১০২ জনের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মামলা করে পুলিশ। এর আগে গত ২৮ অক্টোবর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ২৯ অক্টোবর তাকে আদালতে হাজির করা হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রশিদুল আলম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। পরে ২২ নভেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন সেশন জজ আদালত আবারও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। ৭ ডিসেম্বর তৃতীয়বারের মতো তার জামিন আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। গত ৩ নভেম্বর গুলশান এলাকা থেকে আমীর খসরুকে আটক করে গোয়েন্দারা। ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে কনস্টেবল নিহতের ঘটনায় করা মামলায় তাকে ছয় দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
পল্টন থানায় ও পুলিশের ওপর হামলা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছে পুলিশ।
ঢাকায় ইসি অভিমুখী বাম জোটের মিছিলে পুলিশের বাধা
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিল, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ, নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে ঢাকায় নির্বাচন কমিশন অভিমুখে বাম গণতান্ত্রিক জোটের মিছিলে বাধা দিয়েছে পুলিশ। আজ রোববার সকালে পল্টন মোড় থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি কদম ফোয়ারার কাছাকাছি আসলে পুলিশ মিছিলকারীদের বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের বিরুদ্ধে মিছিলকারীদের প্রতি মারমুখী আচরণের অভিযোগ ওঠে। পুলিশের বাধার মুখে জোটের নেতাকর্মীরা সেখানেই বসে পড়েন। পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে নেতারা শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশি বাধার নিন্দা জানিয়ে বলেন, সরকারের স্বৈরাচারী আচরণের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে রুখে দাঁড়াতে হবে। ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করে এর বিরুদ্ধে জনগণের রায় ঘোষণা করতে হবে। এর পাশাপাশি নেতারা 'প্রহসনের ও ভাগাভাগির নির্বাচনে' অংশ নিয়ে স্বৈরাচারী সরকারের সহযোগী না হওয়ার জন্য প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেওয়ার আহ্বান জানান। বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে 'পুতুল নির্বাচন কমিশন' হিসেবেও অভিহিত করেন তারা। একইসঙ্গে সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপকে সংবিধানবিরোধী ও জরুরি আইন জারির সামিল হিসেবে অভিহিত করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয় সমাবেশ থেকে। নেতারা বলেন, দেশ একটি সংকটের মধ্যে আছে। তামাশার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে এই সংকট আরও বাড়বে। বিদেশি আধিপত্য দেশকে নতুন সংকটে ফেলতে চাইবে। এর দায় সরকারকেই নিতে হবে। তাদের ভাষ্য, ৭ জানুয়ারি 'ইলেকশন হবে না, সিলেকশন হবে'। এই নির্বাচন নতুন লুটপাটের-ভাগবাটোয়ারার নতুন অধ্যায় সূচনা করবে। তাই অবিলম্বে নির্বাচনী তফসিল বাতিল করে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন তফসিল ঘোষণার দাবি জানান সমাবেশকারীরা। বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবীর জাহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী। সমাবেশ পরিচালনা করেন বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলাম। এসময় সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বাসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা সীমা দত্ত, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহীদুল ইসলাম সবুজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিল, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ, নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে ঢাকায় নির্বাচন কমিশন অভিমুখে বাম গণতান্ত্রিক জোটের মিছিলে বাধা দিয়েছে পুলিশ।
জাতীয় পার্টি নির্বাচনে থাকবে: জাপা মহাসচিব
জাতীয় পার্টি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। আজ রোববার বিকেলে বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। চুন্নু বলেন, 'দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভালোভাবে করতে সরকার নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। সেই কারণে আমরা জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে, চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের পক্ষ থেকে আমি জাতীয় পার্টির সব প্রার্থীকে অনুরোধ করব যে, আমরা এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব এবং নির্বাচন যাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়, প্রতিযোগিতামূলক হয়—আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাব।' তিনি বলেন, 'আমরা আশাবাদী যে, এই নির্বাচনে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য সাংবিধানিক ধারাবাহিকতাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে মানুষের ভোটে অংশগ্রহণ থাকবে। 'এই নির্বাচন করার জন্য আমাদের সব প্রার্থীদের আমরা আজকে চিঠি দিচ্ছি এবং আগামী তারা প্রতীক যাতে নেয় সেই লক্ষ্যে তাদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে,' বলেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, 'আমরা ২৮৩টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। এসব আসনে যারা নির্বাচন করছে রাজনৈতিক, তাদের সঙ্গে আমাদের একটা সমঝোতা হয়েছে বা হবে এ রকম একটা অবস্থা আছে। তবে নির্বাচনে আমরা যাচ্ছি এটাই হলো বড় কথা।'
জাতীয় পার্টি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
বাংলাদেশে আরব বসন্ত ঘটার কোনো সুযোগ নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশে আরব বসন্ত ঘটার কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। আজ রোববার ঢাকার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে '৫২ বছরে বাংলাদেশের অর্জন' শীর্ষক সেমিনার শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। দুদিন আগে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্রের বক্তব্য দেখলাম, তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পরে বাংলাদেশে অ্যারাব স্প্রিংয়ের মতো ঘটাতে চায় আমেরিকা—একজন গণমাধ্যমকর্মী দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মোমেন বলেন, 'রাশান কী বলেছে; এগুলো আমাদের ইস্যু না। অনেকে অনেক ধরনের (কথা) বলবে, সেটা তাদের ইস্যু।' তিনি বলেন, 'আমরা ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করি। সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়—এই নীতিতে। কে কী বললো, না বললো সেটা তাদের মাথা ব্যথা।' আরব বসন্তের সুযোগ আছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমার নিশ্চয়ই মনে হয় না এ ধরনের কোনো সুযোগ আছে। কারণ আমরা একটা গণতান্ত্রিক দেশ। আপনি অবশ্যই আমার সঙ্গে একমত হবেন, শেখ হাসিনার কারণে আমাদের দেশে গণতন্ত্রটা সমুন্নত আছে। 'আমরা ৭ জানুয়ারি নির্বাচন করব। আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করব। বাংলাদেশ যখন হলো তখন এটা ছিল তলাবিহীন ঝুড়ি। এখন আমরা গতিশীল অর্থনীতি, ল্যান্ড অব অপরচুনিটি। পাকিস্তান আমাদের কত উপরে ছিল, আর এখন পাকিস্তান আমাদের কত নিচে! এখন পাকিস্তান বলে, আমরা যদি বাংলাদেশের কাছাকাছি যেতে পারি তাহলে খুব খুশি হবো।' মোমেন বলেন, 'এই যে উন্নয়ন হয়েছে, আমি বলেছি, এর জন্য একটি হলো আমাদের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা। আরেকটি হলো নারী ক্ষমতায়ন। ইচ্ছা থাকলে উপায় হয় এটা আমরা প্রমাণ করেছি। সুতরাং অন্য কিছু আমাদের দরকার নেই।' আরেক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, 'আমরা আগেও হামলা-মামলা, অগ্নি সন্ত্রাস ম্যানেজ করেছি। কিছু দুষ্ট লোক গণতান্ত্রিক প্রচেষ্টাকে বানচাল করার জন্য; যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, তারা এসব অপকর্ম করছে। ইনশাল্লাহ আমাদের দেশের জনগণ ওটা প্রতিহত করবে।' গত শুক্রবার রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এক বিবৃতিতে বলেন, 'জনগণের ভোটের ফলাফল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সন্তোষজনক মনে না হলে "আরব বসন্তের" মতো করে বাংলাদেশকে আরও অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হতে পারে।'
বাংলাদেশে আরব বসন্ত ঘটার কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
ঢাকা-১৭ আসনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলেন জি এম কাদের
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ আসনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। রোববার জাতীয় পার্টির দপ্তর সম্পাদক এম এ রাজ্জাক খান রিটার্নিং কর্মকর্তা সাবিরুল ইসলামের কাছে প্রত্যাহারের চিঠি জমা দেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ আসনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
সবাইকে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাবেও রাজি হয়নি বিএনপি: চ্যানেল ২৪কে কৃষিমন্ত্রী
দেশে সহিংসতা আটকাতে পরিকল্পিতভাবেই বিএনপি নেতাকর্মীদের জেলে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল চ্যানেল ২৪কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কৃষিমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে এলে ছাড় দেওয়ার প্রস্তাবেও রাজী হয়নি বিএনপি নেতাকর্মীরা। আব্দুর রাজ্জাক বলেন, '২০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার না করলে কি বাংলাদেশে আজকে যে গাড়ি চলতেছে এই হরতালের দিন, আপনারা এই গাড়ি দেখতেন?... এছাড়া আমাদের জন্য কোনো গত্যন্তর ছিল না। কোনো অল্টারনেটিভ ছিল না। যেটা করেছি আমরা চিন্তাভাবনা করে করেছি।' আরেক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর এই সদস্য বলেন, 'বারবার বলা হয়েছে নির্বাচন কমিশন থেকে তারা (বিএনপি) যদি নির্বাচনে আসে তাহলে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হবে। পিছিয়ে দেওয়া না, বলাও হয়েছিল যে সবাইকে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে। তাদেরকে জেলে না রাখলে দেশ অচল হয়ে যাবে।'
দেশে সহিংসতা আটকাতে পরিকল্পিতভাবেই বিএনপি নেতাকর্মীদের জেলে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
নির্বাচনে থাকব কি না বিকেলে জানানো হবে: জাপা মহাসচিব
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশ নেবে কি না তা বিকেলে জানানো হবে। আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এ কথা বলেন। চুন্নু বলেন, '৭ জানুয়ারির নির্বাচনের বিষয়ে আমি আগেও বলেছি, এই নির্বাচনে আমরা আসছি। কিন্তু আমরা পরিবেশ-পরিস্থিতির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আজকে এবং আগামীকাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজকে (মনোনয়ন) প্রত্যাহারের দিন এবং আগামীকাল প্রতীক বরাদ্দ। তাই নির্বাচন আমরা কীভাবে করব, বা করব না—এ বিষয়টা আজকের মধ্যে পরিষ্কার হওয়া দরকার।' তিনি বলেন, 'আমাদের চেয়ারম্যান পার্টি অফিসে আছেন। তিনি আমাদের জ্যেষ্ঠ নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আমাদের আরও কিছু নেতা আছেন, যাদের সঙ্গে কথা বলা দরকার। তাদের সঙ্গে কথা বলে আজকে বিকেলে আমরা আবার কথা বলবো।' গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে নির্বাচনের বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে। 'আমরা দলীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলছি, তাদের মতামত নিচ্ছি ব্যাপকভাবে। সেই জন্য আমরা কয়েক ঘণ্টা সময় নিচ্ছি। আমাদের নিজেদের প্রয়োজনে আমরা সময় নিচ্ছি,' বলেন তিনি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশ নেবে কি না তা বিকেলে জানানো হবে।
বরিশালে পুলিশের বাধায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের ইসি কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পণ্ড
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিলের দাবিতে বরিশালে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নির্বাচন কমিশন ঘেরাও কর্মসূচি পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে। আজ রোববার দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাম গণতান্ত্রিক জোট নগরের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের দিকে যাওয়ার পথে পুলিশ লাইন রোড এলাকায় মিছিলটি আটকে দেয় পুলিশ। পরে সেখানেই একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন জোটের নেতাকর্মীরা। এ সময় জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) জেলা সদস্যসচিব চিকিৎসক মনীষা চক্রবর্তী বলেন, 'সংবিধানে সভা-সমাবেশ করার অধিকার থাকলেও আমাদের তা করতে দেয়া হচ্ছে না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।' কর্মসূচিতে বাধা প্রসঙ্গে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিছুল হকের ভাষ্য, বিক্ষোভকারীরা অনুমতি না নিয়ে রাস্তা আটকে মিছিল করেছে। পুলিশ তাদের বাধা দেয়নি। কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করতে বলেছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিলের দাবিতে বরিশালে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নির্বাচন কমিশন ঘেরাও কর্মসূচি পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে।
বিএনপির আগামীকালের হরতাল পিছিয়ে ১৯ ডিসেম্বর
কুয়েতের আমির মারা যাওয়ায় তার সম্মানে হরতাল কর্মসূচি পিছিয়েছে বিএনপি। আজ রোববার দুপুরে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কথা জানান। তিনি বলেন, 'কুয়েতের আমির শেখ নাওয়াফ আল-আহমদ আল-সাবাহ মারা যাওয়ায়, রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। এই কারণে আগামীকালের পরিবর্তে আগামী ১৯ ডিসেম্বর বিএনপি ও সমমনা দলগুলো হরতাল কর্মসূচি পালন করবে।'
কুয়েতের আমির মারা যাওয়ায় তার সম্মানে হরতাল কর্মসূচি পিছিয়েছে বিএনপি।
নির্দিষ্ট সংখ্যক আসনের জাপার সঙ্গে সমঝোতা, থাকবে না নৌকার প্রার্থী: কাদের
জাতীয় পার্টিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন ছাড়বে বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি আরও জানান, এসব আসন থেকে নৌকা মনোনীত প্রার্থীদের প্রত্যাহার করা হবে। আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খানের উদ্দেশে কাদের বলেন, 'আপনি একটা দেশ দেখান পৃথিবীর, যে দেশে সরকার পদত্যাগ করে নির্বাচন হয়। ক্ষমতায় ক্ষমতাসীন সরকার থাকবে না! এটা তো কোথাও নেই। আপনি কোথা থেকে এটা আবিষ্কার করলেন?' বিজয়ের দিনকে উপহাস করে বিএনপি নেতা পরাজয় দিবস বলছে উল্লেখ করে কাদের বলেন, 'পরাজয় তো আপনাদের আর জামায়াতের। একাত্তরের পরাজয় তো আপনাদের। ১৬ ডিসেম্বর আপনাদের পরাজয় দিবস। পাকিস্তানের যারা দোসর তাদের পরাজয়। মুক্তিযুদ্ধে যারা বিশ্বাস করেন, তাদের জন্য এটা বিজয় দিবস।' তিনি বলেন, 'তারা মানুষের জন্য রাজনীতি করে না। গণতন্ত্রে তারা বিশ্বাস করে না। তাদের গণতন্ত্রের ইতিহাস আমরা জানি; ১৫ ফেব্রুয়ারি মার্কা নির্বাচন, জেনারেল জিয়ার হ্যাঁ-না ভোট, এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার, ঢাকা-১০ এখানকার ফার্সিকাল ইলেকশন, মাগুরার প্রহসনমূলক নির্বাচন এগুলো তো বিএনপিরই সৃষ্টি! বিএনপি আবার সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে কোন মুখে! তাদের কোন নির্বাচন তারা সুষ্ঠু করেছেন? 'এই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারই শান্তিপূর্ণভাবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে। আর কেউ শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি। এটাই আমাদের ইতিহাস,' যোগ করেন তিনি। আজকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। আপনারা যাদের মনোনয়ন দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে পাঁচ জনের মতো প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার হয়েছে, এর বাইরে আর কতটি আসনে আপনারা প্রার্থীদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আমরা যতটা নেব, আমাদের সভাপতি চিঠির মাধ্যমে প্রত্যাহার করে নিতে পারেন। কোনো অসুবিধা নেই। সেটা আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে জেনেছি।' এ সময় বিকেল ৪টার পর্যন্ত অপেক্ষা করার অনুরোধ জানান। কাদের বলেন, '৪টার মধ্যে সব চূড়ান্ত হয়ে যাবে। চার ঘণ্টা অপেক্ষা করবেন না! ধৈর্য ধরুন।' জাতীয় পার্টির সঙ্গে আপনাদের আলোচনা চলছে। শোনা যাচ্ছে আপনারা ২৬টির মতো আসন ছাড়তে রাজি হয়েছেন। আসলে আলোচনা কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে কাদের বলেন, 'তাদের সঙ্গে সমঝোতা আমাদের আছে। এখানে কোনো প্রকার অশোভন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। আমরা বসেই আলোচনা করেছি এবং শুধুমাত্র ভাগাভাগির বিষয় নয়, বিএনপি নির্বাচন বর্জন-প্রতিরোধ করার যে ডাক দিয়েছে, সবার মধ্যে সমন্বয়-ঐক্য থাকা দরকার যারা নির্বাচন করবে—এসব নিয়েও আমরা আলাপ-আলোচনা করেছি। প্রার্থিতার বিষয়টা আজ বিকেল ৪টায় পরিষ্কার হয়ে যাবে।' তিনি বলেন, 'চার ঘণ্টার মধ্যে রদবদল হতে পারে যদি হয় তখন তো আমার কথার কোনো মূল্য থাকবে না। আমি যতটুকু জানি, আমাদের পক্ষ থেকে আমরা একটা নির্দিষ্ট সংখ্যা; আপস-মীমাংসা বা সমঝোতায় পৌঁছতে পারি সে রকম একটা ধারণা জাতীয় পার্টিকে আমরা দিয়েছি। 'জাতীয় পার্টির নিজস্ব চাওয়া আছে। তারা তো চাইবে আমাদের কাছে, কাজেই চাওয়াটা বড়ই হতে পারে। চাওয়া তো কারও ছোট হয় না কিন্তু আমাদেরও সামর্থ্য কতটা আছে সেটা আবার আমরা যখন বসি তখন আমাদেরও ভাবতে হয়। আমাদেরও সমন্বয়ের ব্যাপার আছে; বিরাট পার্টি। পার্টি কতটুকু দিতে পারবে সেটা আমাদের নিজেদের সিদ্ধান্তের বিষয়,' বলেন কাদের। তিনি আরও বলেন, 'আমরা যেসব আসনগুলোতে সমঝোতায় পৌঁছাব, সেখানে নৌকা তো আমাদের প্রত্যাহার করতে হবে নীতিগতভাবে।' শরিকদের কতগুলো আসন দেওয়া হবে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'সেটা আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত হবে।' আপনারা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনের কথা বলছেন। আসন সমন্বয় করে নৌকার প্রার্থী তুলে নেওয়া হচ্ছে, তাহলে জাতীয় পার্টিকে তো আগেই জয়ের নিশ্চয়তা দেওয়া হলো—গণমাধ্যমকর্মী দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কাদের বলেন, 'নৌকা প্রার্থী তুলে নিলেই কি জয় হবে? বাংলাদেশে এখন স্বতন্ত্র প্রার্থী কত? এরা কি প্রতিদ্বন্দ্বী না? নৌকা না থাকলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে। অন্যান্য আরও দল আছে। ২৮টি দল, আওয়ামী লীগ তো একটা দল।' আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমার এখন পর্যন্ত মনে হয় না জাতীয় পার্টি সরে যাবে। তারা নির্বাচন করবে এই মর্মে তাদের সিদ্ধান্ত আছে। তারা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবে এখন পর্যন্ত আমার কাছে সেই তথ্য নেই।' নির্বাচনী সহিংসতা প্রসঙ্গে কাদের বলেন, 'নির্বাচন, টুকটাক দুএকটা ঘটনা ঘটতেই পারে। এই দেশের ইতিহাস সব নির্বাচনে কিছু না কিছু তো ছোটখাটো ঝামেলা হয়। এটাতে সামগ্রিকভাবে আশঙ্কা করার কী আছে? আমাদের কোনো শঙ্কা নেই। কোনো উদ্বেগ নেই। আমরা নির্ভীক চিত্তে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। যতই বাধা দেবে, নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হবে না। এটা আমাদের অঙ্গীকার।'
জাতীয় পার্টিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন ছাড়বে বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
হাইকোর্টে মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি ৩ জানুয়ারি
প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুরের মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন আবেদনের রুল শুনানির সময় নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ৩ জানুয়ারি তার জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। আজ রোববার সকালে বিচারপতি মোহাম্মদ সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন শুনানির সময় নির্ধারণ করেন। এর আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন আবেদনের রুল শুনানি জরুরিভিত্তিতে করতে জয়নুল আবেদীনের নেতৃত্বাধীন আইনজীবীরা আবেদন করেছিলেন। গত ১৪ ডিসেম্বর সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদনের রুল শুনানির সময় নির্ধারণের জন্য হাইকোর্ট আজকের দিন ধার্য করেছিলেন। গত ৭ ডিসেম্বর মির্জা ফখরুলের জামিন নামঞ্জুর করে, কেন তাকে জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে সাত দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। গত ৩ ডিসেম্বর মির্জা ফখরুল তার আইনজীবীদের মাধ্যমে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করে বলেন, তিনি কোনোভাবেই প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। তিনি একজন বয়স্ক ব্যক্তি এবং হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় গত ২৯ অক্টোবর মির্জা ফখরুল কারাগারে পাঠানো হয়। গত ২২ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত তার জামিন আবেদন নাকচ করেছিলেন। বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা ৪৩ দিন ধরে কারাগারে আছেন।
প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুরের মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন আবেদনের রুল শুনানির সময় নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট।
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা এমপি আয়েন উদ্দিনের
রাজশাহী-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আয়েন উদ্দিন আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। শনিবার বিকেলে আয়েন উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি রোববার রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করব। আমার পক্ষে নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করা অসম্ভব।' আয়েন উদ্দিন ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে প্রথমবারের মতো এমপি হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে পুনরায় নির্বাচিত হন তিনি। আয়েন বলেন, আমার আশা ছিল দলের হাইকমান্ড শেষ মুহূর্তে হলেও আমার আসনে মনোনয়নের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে। এ কারণে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলাম। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকার কথা অস্বীকার করেন তিনি। 'আমি আমার নিজের দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাতে পারি না। আমি এটা কখনো করিনি। আমি প্রার্থী হলে অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘাত তৈরি হবে।' তবে ভিন্ন কথা বলছেন পবা উপজেলা ও মোহনপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনের আওয়ামী লীগ নেতারা। দলটির স্থানীয় চার জন নেতা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, আয়েন উদ্দিনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে 'স্বস্তি' হিসেবে দেখছেন তারা। আওয়ামী লীগের মোহনপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন বলেন, গত সপ্তাহে আমরা সংঘাত এড়াতে তাকে সরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম।
রাজশাহী-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আয়েন উদ্দিন আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি।
সোমবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল বিএনপির
আগামী ১৮ ডিসেম্বর সোমবার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বিএনপি। আজ শনিবার বিকেলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে হরতালের ঘোষণা দিয়েছেন। রিজভী বলেন, 'বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর যে আন্দোলন, সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আগামী সোমবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরতাল পালন করা হবে।' তিনি বলেন, 'এটা মানুষের পক্ষের হরতাল, গণতন্ত্রের পক্ষের হরতাল, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষের হরতাল, নাগরিক স্বাধীনতার পক্ষের হরতাল।' রিজভী আরও বলেন, 'আমি আপনি আমরা যারা স্বাধীন দেশের স্বাধীন মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকতে চাই, তাদের জন্য এই হরতাল। এই হরতাল কারও কৃতদাস হওয়ার জন্য নয়। একটি একদলীয় নিষ্ঠুর কর্তৃত্ববাদী শাসনের অধীনে আমরা প্রত্যেকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হব, সেটির বিরুদ্ধে এই হরতাল।'
আগামী ১৮ ডিসেম্বর সোমবার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বিএনপি।
অংশগ্রহণের পরিবেশ তৈরি করে নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে: জোনায়েদ সাকি
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে এসে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন তিনি। জোনায়েদ সাকি বলেন, 'এই যে তামাশার নির্বাচন এটা বন্ধ করতে হবে, একটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে, রাজনৈতিক সংকটের সমাধান করতে হবে এবং পুনঃতফশিল করে নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। মানুষ যে লড়ছে, এই লড়াইয়ের বিজয় অনিবার্য।' জোনায়েদ সাকি বলেন, 'সরকার উন্নয়নের কথা বলে আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে এসে আজকে ভোটাধিকারের জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। যেই ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার লড়াইটাকে আমরা স্বাধীনতা সংগ্রামে পরিণত করেছিলাম। রক্তের উপর দাঁড়িয়ে একটি রাষ্ট্র পত্তন করেছিলাম, সেই রাষ্ট্রে, সেই স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী দলটি এখন মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। এর চেয়ে এই জাতির দুর্ভাগ্য আর কী হতে পারে।' তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের মানুষ একাত্তর সালে লড়াই করেছিল, একটা স্বাধীন রাষ্ট্র পত্তন করেছে। এখন মানুষ ভোটাধিকারের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে, এটাই মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা। মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা, চেতনা প্রতিষ্ঠা করতে এখন ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য লড়তে হবে।'
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।
ডামি নির্বাচনের কী দরকার, ঘোষণা করে দিলেই হয় অমুক এমপি, তমুক মন্ত্রী: নজরুল ইসলাম খান
বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শোভাযাত্রা শুরু করেছে বিএনপি। আজ শনিবার দুপুর ২টা ২২ মিনিটে শোভাযাত্রা শুরুর আগে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়েছে। সমাবেশে বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান বলেন, '১৯৭১ সালে বিজয় হয়েছিল গণতন্ত্রের। সেই গণতন্ত্রকে হত্যা করে আজকে বিজয় দিবসকে আওয়ামী লীগ সরকার পরাজয় দিবসে পরিণত করেছে। আমরা চেয়েছিলাম পাকিস্তানের ২২ পরিবার, যারা সব বৈদেশিক মুদ্রা কুক্ষিগত করে পাকিস্তানকে একটি লুটপাটের দেশে পরিণত করেছিল তাদেরকে হটিয়ে এমন একটি স্বাধীন দেশ হবে যেখানে মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি হবে। আজকে আওয়ামী লীগ সরকার ২২ পরিবারের পরিবর্তে ২২০টি ধনী পরিবার দিয়ে বাংলাদেশের সমস্ত সম্পদ লুণ্ঠন করে নিয়েছে।' তিনি আরও বলেন, 'চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছি সরকারের যদি সৎ সাহস থাকে, সরকার যদি মনে করে তারা উন্নয়ন করে বাংলাদেশকে জোয়ারে ভাসিয়ে দিয়েছে তাহলে ক্ষমতা ছুড়ে ফেলে দিয়ে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনে আসুক। জনগণ তাদের ইচ্ছামতো ভোট দিক। দেখা যাবে, কে জেতে। যেভাবে টাকা পয়সা আদান-প্রদান, সিট ভাগাভাগি করে তারা একটি ভুয়া সংসদ নির্বাচন করার পথে যাচ্ছে। এটা কোনো নির্বাচন হতে পারে না। পৃথিবীর কোনো দেশে এ ধরনের নির্বাচন হয় না। এমনকি বাংলাদেশের মতো প্রকাশ্যে বাহাদুরি করে পৃথিবীর যেসব দেশ গণতন্ত্রের বিশ্বাস করে না তারাও ভোটচুরি করে না।' 'আজকের যেটা সত্য সেটা জনগণের সামনে আমরা তুলে ধরছি। জনগণ নির্ধারণ করবে বাংলাদেশ পরিচালনার দায়িত্ব ক্ষমতা কাকে দেবে। বিএনপি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করে না। বিএনপি রাজনীতি করে জনগণের কল্যাণের জন্য, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য,' বলেন তিনি। সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, 'স্বাধীনতার ৫২ বছর পর বলতে হচ্ছে আমরা আবার গণতন্ত্র হারিয়েছি। গণতন্ত্রের নামে স্বৈরশাসন চলছে। জনগণের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। 'বিএনপির যারা সংগ্রামী নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা— মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আমানুল্লাহ আমানসহ অসংখ্য নেতা কারারুদ্ধ। প্রতিদিন মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে, দন্ডিত করা হচ্ছে। আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এসব হচ্ছে নির্বাচন নামের একটা খেলা খেলার জন্য।' 'বাংলাদেশের কোনো বিরোধী দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না। যারা এই নির্বাচনের খেলায় যোগ দিয়েছে তারা সবাই ক্ষমতাসীন দলের প্রধানকে পা ছুয়ে সালাম করে, তার দোয়া নিয়ে নির্বাচনে নামছে। সবাই জানে, পত্র পত্রিকায় ছাপা হচ্ছে কারা, কোন দল কয়টা আসন পাবে, কোন নেতা কোন এলাকা থেকে নির্বাচন করবে। এটা কোনো নির্বাচন, ভাবতে পারেন? নির্বাচন হবে প্রতিযোগিদের মধ্যে। এখন সেই ব্যাপার নাই। কারণ জনগণ এই নির্বাচন চায় না। এই নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে যাবে না। ভোটার আনার জন্য এখন নিজের দলের লোকজনকেই ডামি প্রার্থী বানাচ্ছে। লোকে বলে, একবার নির্বাচন হলো প্রার্থী ছিল না, আরেকবার নির্বাচন হলো রাতের বেলায় ভোট হয়ে গেল আর এবারের নির্বাচন হলো ডামি নির্বাচন,' বলেন তিনি। নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, 'ডামি নির্বাচনের জন্য সাড়ে ৭ লাখ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোক নিয়োগ দেওয়া হবে। ঘোষণা করে দিলেই হয় কোন আসনে কে নির্বাচিত হলো। এই খেলার কী দরকার? এত লোকের কষ্টের কী দরকার? যে দেশের মানুষ এত কষ্টে আছে, সাধারণ মানুষ দুই বেলা খেতে পারে না সেখানে ২ হাজার কোটি টাকা খরচ করে এই নির্বাচন করার কী অর্থ আছে? ঘোষণা করে দিলেই হয় অমুক এমপি, তমুক মন্ত্রী।' 'এই রসিকতার জন্য আমরা দেশ স্বাধীন করি নাই। আমরা চাই বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হোক। নির্বাচনে সবাই অংশগ্রহণ করবে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। জনগণ যাকে পছন্দ করবে তারা নির্বাচিত হবে। আমরা সেই নির্বাচন আদায়ের জন্য লড়াই করছি। এই লড়াইয়ে আমাদের অনেক সাথী জীবন দিয়েছে, অনেকে কষ্ট করেছে এখনো করছে আমরা তাদের রক্তের সঙ্গে, কষ্টের সঙ্গে বেঈমানি করব না। এই লড়াই চলবে ততদিন পর্যন্ত যতদিন না জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়,' বলেন তিনি। সমাবেশে অংশ নিতে আজ সকাল থেকেই নয়াপল্টনে বিএনপির নেতাকর্মীরা দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে জড়ো হন। তারা পোস্টার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে দিতে সমাবেশস্থলে আসেন। সমাবেশের আগে নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত দলীয় কর্মী-সমর্থকদের অবস্থান করতে দেখা যায়। সমাবেশস্থল ও এর আশপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বাড়ানো হয়েছে।
বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শোভাযাত্রা শুরু করেছে বিএনপি। আজ শনিবার দুপুর ২টা ২২ মিনিটে শোভাযাত্রা শুরুর আগে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়েছে।
হত্যার হুমকির অভিযোগে জি এম কাদেরের জিডি, চুন্নু বললেন ‘জানি না’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হবে এমন হুমকি পেয়েছেন জানিয়ে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, 'জি এম কাদেরের ব্যক্তিগত সহকারী আবদুল হান্নান পরশু দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে জিডি করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, সপরিবারে হত্যা করা হবে হোয়াটস অ্যাপে এমন হুমকি পেয়েছেন জি এম কাদের।' জিডির একটি অনুলিপি দ্য ডেইলি স্টারের হাতে এসেছে। তাতে একটি মোবাইল ফোন নম্বর উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ১৩ ডিসেম্বর রাত ৪টা ৩ মিনিটে মেসেজ পাঠিয়ে জি এম কাদেরকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নির্বাচনকে সফল করার প্রয়াস থেকে বিরত থাকার জন্য বিভিন্ন প্রকার হুমকি দেওয়া হয়েছে। জিডিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ওই ব্যক্তির কথা মতো নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত না থাকলে জাপা চেয়ারম্যান, তার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের হত্যার হুমকি দেয়। আজ দুপুরে বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা ডিজির প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, 'চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে কোনো জিডি হয়েছে কি না আমি জানি না। তবে হুমকি আমার ফোনেও একটা না, বহু আছে কিন্তু আমি পরোয়া করি না।' নিজের মোবাইল ফোন দেখিয়ে চুন্নু বলেন, 'অনেক হুমকি এখানে আছে; মেরে ফেলবে, এই করবে, ওই করবে—আমার কিছু যায়-আসে না। আমি জিডি করারও প্রয়োজন বোধ করছি না। কারণ নির্বাচনে যাব, এটা আমার রাজনীতি। আমি জিডি করব না, করা প্রয়োজন মনে করি না। বাংলাদেশের নাগরিক আমি, এ দেশে যুদ্ধ করেছি। কারও ভয়ে অন্তত পক্ষে আমি ভীত না।' আপনার কাছে হুমকি এসেছে নির্বাচন করার নাকি নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। সরে যাওয়ার জন্য, করার জন্য না।' গতকাল আপনাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার বৈঠক হয়েছে, আজকেও বৈঠকের কথা শুনছি। কী নিয়ে বৈঠক জানতে চাইলে জাপা মহাসচিব বলেন, 'বৈঠক ৭ তারিখ পর্যন্ত চলবে, নির্বাচনের সার্বিক বিষয়ে। আমরা একটা দৃষ্টান্ত রাখতে চাই, নির্বাচনে আমরা প্রতিযোগিতা করব। নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য দুই দলের প্রয়োজনে আমরা মাঝে মাঝে বসব।' আপনারা আওয়ামী লীগকে তালিকা দিয়েছে নির্দিষ্ট করে কিছু আসন থেকে প্রার্থী সরিয়ে নেওয়ার জন্য; এটা কতটা সত্য জানতে চাইলে চুন্নু বলেন, 'সব কৌশল প্রকাশ করা যাবে না।'
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হবে এমন হুমকি পেয়েছেন জানিয়ে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে।
নয়াপল্টনে বিজয় দিবসের শোভাযাত্রা শুরু বিএনপির
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিজয় দিবসের শোভাযাত্রা শুরু হয়েছে। আজ শনিবার দুপুর ২টা ২২ মিনিটে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে নগর বিএনপি আয়োজিত এ সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে অংশ নিতে আজ সকাল থেকেই নয়াপল্টনে বিএনপির নেতাকর্মীরা দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে জড়ো হন। তারা পোস্টার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে দিতে সমাবেশস্থলে আসেন। দলীয় কার্যালয়ের সামনে একটি ট্রাকে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়। সেখানে শোভাযাত্রা শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়েছে। সমাবেশে বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান বলেন, 'সরকার জাল নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে।' বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আজকে বলতে হবে গণতন্ত্র হারিয়ে গেছে। দেশে এখন স্বৈরাচার বিরাজ করছে।' বিএনপি নেতা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরুসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের কারাগারে রাখা হয়েছে, প্রতিদিন বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন সফল না হওয়া পর্যন্ত চলবে। মিছিলটি রাজধানীর শান্তিনগর মোড়ে শেষ হওয়ার কথা। সমাবেশের আগে নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত দলীয় কর্মী-সমর্থকদের অবস্থান করতে দেখা যায়। সমাবেশস্থল ও এর আশপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বাড়ানো হয়েছে।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিজয় দিবসের শোভাযাত্রা শুরু হয়েছে।
নব্য হানাদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বিএনপি-জামায়াত: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপি-জামায়াত নব্য হানাদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির পুষ্পস্তবক অর্পণের পর উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথে আমরা বহুদূর এগিয়ে গেছি। আজকে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্যে উদ্বৃত্ত দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পৃথিবীর সামনে উপস্থাপিত হয়।' তিনি বলেন, 'আমরা আরও বহুদূর এগিয়ে যেতে পারতাম। যদি নেতিবাচক, ধ্বংসাত্মক রাজনীতি না থাকত। আজকে যে ধ্বংসাত্মক রাজনীতি; পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেমন নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর হামলা চালিয়ে হত্যা করেছিল, আজকে নব্য হানাদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বিএনপি এবং জামায়াত। 'তারা আজকে সাধারণ মানুষের ওপর পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করছে। সাধারণ মানুষকে তারা জিম্মি করছে এবং গাড়ি-ঘোড়াতে আগুন দিচ্ছে। আজকে নব্য হানাদার হিসেবে রূপান্তরিত হয়েছে বিএনপি-জামায়াত। তাদের এই অপরাজনীতি যদি না থাকত বাংলাদেশ এত দিনে আরও বহুদূর এগিয়ে যেতে পারতো,' যোগ করেন তিনি। হাছান মাহমুদ বলেন, 'সুতরাং বাংলাদেশকে স্বপ্নের ঠিকানায় নিয়ে যেতে হলে এই অপরাজনীতি এবং অপরাজনীতি যারা করে তাদেরকে নির্মূল করতে হবে।' এদিন দুপুরে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন আয়োজিত বিজয় শোভাযাত্রা কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, '২৮ অক্টোবরের ঘটনায় প্রত্যেকের বিচার হবে। আপনারা দেখতে পাচ্ছে, প্রতিটি বিচার হচ্ছে, বিচারের রায় হচ্ছে। সাংবাদিকদের যেভাবে পেটানো হয়েছে, একজন সাংবাদিককে মাটিতে ফেলে যেভাবে সাপ পেটানোর মতো করে পেটানো হয়েছে এগুলো অবশ্যই বাংলাদেশে বিচার হচ্ছে। আমরা বদ্ধপরিকর। 'অবশ্যই বিরোধী রাজনীতি থাকবে। সরকারের পতন চাইবে, মন্ত্রীদের সমালোচনা হবে। মন্ত্রীদের পদত্যাগ দাবি হয় কিন্তু সেই কথা বলে মানুষের ওপর পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করা, মানুষের গাড়ি-ঘোড়া জ্বালিয়ে দেওয়া; একটি বাস জ্বালিয়ে দেওয়া মানে একটি পরিবারকে জ্বালিয়ে দেওয়া। এগুলো কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নয়, এগুলো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড,' যোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, 'পৃথিবীর কোথাও আজকে রাজনৈতিক কারণে এভাবে মানুষ হত্যা হচ্ছে না। এভাবে গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।' দমন নয়, এই অপশক্তিকে নির্মূল করতে হবে বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি-জামায়াত নব্য হানাদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
‘যে নির্বাচনী খেলা চলছে, তার ফলাফল ঢাকায় বসে নির্ধারণ করা হচ্ছে’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, 'আজকে যেই নির্বাচনী খেলা চলছে, সেই খেলার ফলাফল ঢাকায় বসে নির্ধারণ করা হচ্ছে। আগামী ৭ তারিখে শুধু সেই ফলাফল ঘোষণা করা হবে।' আজ শনিবার সকালে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বিজয় দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, 'আমরা এই নির্বাচনী খেলা বন্ধের দাবি জানাই এবং জনগণ যেন এই খেলায় অংশগ্রহণ না করে সেই অনুরোধ জানাই।' নজরুল ইসলাম বলেন, 'আমরা অনুরোধ জানাই যারা এই নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত তাদের মধ্যে গঠনতন্ত্র ও মানবিক মূল্যবোধ থাকবে এবং তারা এই অন্যায় অনাচারের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করবেন না।' তিনি বলেন, 'এরশাদের সামরিক স্বৈর শাসনের বিরুদ্ধে নয় বছর লড়াই করে, বেগম খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আজকে আবার সেই মহান মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ ফসল গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। আজ কোনো গণতন্ত্র নাই।'
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, 'আজকে যেই নির্বাচনী খেলা চলছে, সেই খেলার ফলাফল ঢাকায় বসে নির্ধারণ করা হচ্ছে। আগামী ৭ তারিখে শুধু সেই ফলাফল ঘোষণা করা হবে।'
বিজয় দিবসে কর্মসূচিতে বাধা নেই, নির্বাচন বিরোধী কর্মকাণ্ড করা যাবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বিজয় দিবস উপলক্ষে কোনো কর্মসূচি থেকে নির্বাচন বিরোধী কর্মকাণ্ড করা যাবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'শিডিউল ঘোষণা হয়ে গেছে। এখন সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে। আমি আগেও বলেছি, একটা নির্দেশনা তারা দিয়েছিলেন, সেটা যথাযথভাবে পালন করার জন্য আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।' তিনি বলেন, 'আজকে যেহেতু বিজয় দিবস, বিজয়ের আনন্দ সবাই করবে এটিই স্বাভাবিক। এটি যাতে সংযতভাবে করে, নির্বাচনমুখী যারা তাদের বিপরীতে কোনো কর্মকাণ্ড না করে সেটা আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী খেয়াল রাখবে।' স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, 'বিজয়ের মাস, বিজয়ের দিন সে জন্য কাউকে আমরা মানা করছি না বিজয়ের আনন্দ প্রকাশ করতে। সে ক্ষেত্রে তারা (বিএনপিসহ বিরোধী দল) সংযতভাবে চলবে এবং তাদেরকে বলা হয়েছে, আপনারা একটা রোডম্যাপ দেবেন—কোথায় থেকে কীভাবে যাবেন, কী করবেন। সে অনুযায়ী আমাদের ডিএমপি কমিশনার তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন।'
বিজয় দিবস উপলক্ষে কোনো কর্মসূচি থেকে নির্বাচন বিরোধী কর্মকাণ্ড করা যাবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বিজয় দিবসের শোভাযাত্রা: নয়াপল্টনে জড়ো হচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা
বিজয় দিবসের শোভাযাত্রায় অংশ নিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জড়ো হচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে শ্লোগান দেন তারা। বিএনপির ঢাকা মহানগর শাখার আয়োজনে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দুপুর ১টায় এটি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা সরকারবিরোধী বিভিন্ন  প্ল্যাকার্ড ও পোস্টার নিয়ে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে ছোট ছোট মিছিলে দলের প্রধান কার্যালয়ের সামনে আসেন। এসময় দলীয় কার্যালয়ের বাইরে বেশ কয়েকটি পিকআপ ট্রাক দাঁড় করানো দেখা যায়। তবে বিএনপির সিনিয়র নেতারা এখনো সমাবেশস্থলে আসেননি। গত ২৮ অক্টোবর দলের মহাসমাবেশের পর পুলিশ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরপর থেকেই পরিত্যক্ত ও তালাবদ্ধ রয়েছে বিএনপির প্রধান কার্যালয়। রয়েছে পুলিশের কড়া পাহাড়া। বিএনপির র‍্যালি ঘিরে নয়াপল্টন এলাকায় সড়কের একপাশে যানবাহন চলাচল সীমিত হয়ে পড়েছে। আশপাশে বাড়ানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে গত ২৯ অক্টোবর থেকে দফায় দফায দেশব্যাপী হরতাল-অবরোধের ডাক দিয়েছে বিএনপি।
বিজয় দিবসের শোভাযাত্রায় অংশ নিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জড়ো হচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
‘সিট ভাগাভাগি করে যদি এমপি নির্ধারণ হয়, তাহলে এই নির্বাচন ইতোমধ্যে ব্যর্থ হয়ে গেছে’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান বলেছেন, 'আজকে আওয়ামী লীগ এই দেশের কোটি কোটি মানুষের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে, এই দেশের গণতন্ত্রের অপমৃত্যু ঘটিয়েছে। তারা চরম দুর্নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধংস করে দিয়েছে।' আজ শনিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের এ মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, 'স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে বিজয় দিবসে আজকে আমরা কোন বিজয় উদযাপন করতে এসেছি- বাংলাদেশের মানুষকে এই প্রশ্ন সরকারের সামনে তুলে ধরতে হবে। এটা কিসের বিজয়? এটা কি একদলীয় শাসনের বিজয়? নাকি একনায়কের শাসনের বিজয়? নাকি এখানে এমন একটি সরকার চলছে, যারা মানুষকে কথা বলতে দেয় না, যারা মানুষকে ভোট দিতে দেয় না, যারা মানুষকে অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এই জন্যে কি আজ থেকে ৫২ বছর আগে বাংলাদেশ তথা পূর্ব পাকিস্তানের লক্ষ লক্ষ মানুষ বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল। একটি স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টি করবে, এই কারণে কি করেছিল। তারা করেছিল গণতন্ত্রের জন্য, তারা করেছিল এই দেশের দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য।' তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগে যদি দাবি করে, তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি তাহলে আওয়ামী লীগকে জবাবদিহি করতে হবে, কেন তারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়ে বাংলাদেশে একদলীয় স্বৈরাচারী সরকার কায়েম করেছে।' বিএনপি নেতা মঈন খান বলেন, 'আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ এই সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এই সরকারের নৈতিক পরাজয় ইতোমধ্যে হয়েছে। তারা একটি নির্বাচনের তফসিল দিয়েছে, কোন নির্বাচন, যেই নির্বাচনে তারা প্রকাশ্যে সকল লজ্জা ভুলে গিয়ে প্রকাশ্যে দর কষাকষি করে সিট ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। সিট ভাগাভাগি করে যদি এমপি নির্ধারিত হয়, তাহলে এই নির্বাচন ইতোমধ্যে ব্যর্থ হয়ে গেছে।' নির্বাচনী ফলাফল তারা তাদের কাগজে কলমে রাজধানীতে সর্বোচ্চ অফিসে বসে তারা লিখে ফেলেছে উল্লেখ করে মঈন খান বলেন, 'আগামী ৭ তারিখে শুধু তারা সেই ফলাফল ঘোষণা করবে। কাজেই এটা কোনো নির্বাচন নয়। এই নির্বাচন দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে ধোকা দেওয়া যাবে না। আজকে আমরা বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছি এবং আমরা কোটি কোটি মানুষকে সম্পৃক্ত করেছি। আমরা শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী, আমরা লগি বৈঠার রাজনীতি করি না, বিএনপি করে না।' বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, 'আজকে শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় বিএনপি এই দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে, সেই জন্য রাজপথে আছি। সরকারের সমস্ত উসকানি বর্জন করুন। মিথ্যা হামলা মামলা ও গায়েবি মামলা দিয়ে তারা গত ছয় সপ্তাহে আমাদের ২৩ হাজার লোককে কারারুদ্ধ করেছে, এইসব ভুয়া মামলা দিয়ে আমাদের গণতন্ত্রকামী নেতাকর্মীদের কারারুদ্ধ করে এই দেশে তারা থাকতে পারবে না। এই দেশের মানুষ তাদের বর্জন করেছে।' 'আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে তারা রাজনৈতিক মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করে রেখেছে, মহাসচিবকে গায়েবি মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে ১/১১ এর ভুয়া মামলা দিয়ে তাকে বিদেশে আটকে রেখেছে । তিনি দেশে ফিরতে পারছেন না,' যোগ করেন তিনি। এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান,  নজরুল ইসলাম খানসহ সিনিয়র নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান বলেছেন, 'আজকে আওয়ামী লীগ এই দেশের কোটি কোটি মানুষের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে, এই দেশের গণতন্ত্রের অপমৃত্যু ঘটিয়েছে। তারা চরম দুর্নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধংস করে দিয়েছে।'
ভোট বর্জনকারী দলগুলোকে এক প্ল্যাটফর্মে আনার পরিকল্পনা বিএনপির
টানা অবরোধ ও হরতালের পর বিএনপি এখন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ভোট বর্জনকারী সব রাজনৈতিক দলকে এক প্ল্যাটফর্মে আনার পরিকল্পনা করছে। দলীয় সূত্র বলছে, তাদের চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলন আগামী ১৮ ডিসেম্বর পরের ধাপে প্রবেশ করবে। এতে হরতাল, অবরোধ ছাড়াও সমাবেশ ও বিক্ষোভের মতো কর্মসূচিও থাকবে। এর মাধ্যমে বিএনপি ও এর মিত্ররা ভোটারদের ভোটদানে নিরুৎসাহিত করতে চায়। এই ১৮ ডিসেম্বরেই ৭ জানুয়ারির নির্বাচন সামনে রেখে ভোটে থাকা প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের কথা নির্বাচন কমিশনের। আন্দোলনের পরবর্তী ধাপ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা বিভিন্ন দলের সঙ্গে একযোগে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। যেসব দল এখনো এই আন্দোলনে আসেনি তাদের সঙ্গে আমরা আলোচনার জন্য তৈরি।' বিএনপি ও এর সমমনা দলগুলো এরই মধ্যে চলমান আন্দোলনকে আরও বেগবান করার জন্য নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে শুরু করেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্বাচন থেকে দূরে থাকা দলগুলোর সঙ্গে কথা বলেছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। সূত্র জানায়, সাতটি রাজনৈতিক দলের প্লাটফর্ম গণতন্ত্র মঞ্চের দুই নেতা এর বিরোধিতা করছেন। কারণ মতাদর্শগত পার্থক্যের কারণে এই প্লাটফর্মে জামায়াতে ইসলামীর অন্তর্ভুক্তি নিয়ে তাদের আপত্তি আছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, নির্বাচন বর্জনকারী সব রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে 'সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ' গঠনের পরিকল্পনা করছেন তারা। এ ব্যাপারে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী জানান, আন্দোলনকে আরও বেগবান করার উপায় নিয়ে তারা আলোচনা করছেন। গতকাল শুক্রবার ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'আমরা দেশের বৃহত্তর স্বার্থে একযোগে সব রাজনৈতিক দলকে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।' বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর ভাষ্য, গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে সব বিরোধী রাজনৈতিক দল রাজপথে নেমেছে। গতকাল তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, 'আমাদের দাবির ব্যাপারে আমরা সবাই একমত। বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।' দলীয় সূত্র বলছে, ১৮ ডিসেম্বর ভোটে থাকা প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের দিন হরতাল ডাকতে পারে বিএনপি। পরে ১৯ ডিসেম্বর সকাল ৬টা থেকে দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ঘোষণা আসতে পারে। বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনের সমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর বিএনপি ও এর সমমনা দলগুলো কয়েক দফা হরতাল ও অবরোধ করেছে। সূত্রমতে, বিকল্প খুঁজে না পাওয়ায় ভোটের দিন পর্যন্ত এ ধরনের কর্মসূচিতেই থাকার কথা তাদের। এদিকে বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার দুপুর ১টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল বের করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এক এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন রিজভী। তবে এই কর্মসূচি পালনে তারা পুলিশের অনুমতি নিয়েছেন কিনা, তা স্পষ্ট করেননি তিনি। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির আয়োজনে মিছিলটি মগবাজারে গিয়ে শেষ হবে। সূত্র জানায়, বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মিছিলে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি ঢাকার আশপাশের জেলাগুলো থেকেও দলীয় নেতাকর্মীরা মিছিলে যোগ দেবেন।
টানা অবরোধ ও হরতালের পর বিএনপি এখন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ভোট বর্জনকারী সব রাজনৈতিক দলকে এক প্ল্যাটফর্মে আনার পরিকল্পনা করছে।
জাপাকে ৩০ আসনে ‘ছাড় দিতে পারে’ আওয়ামী লীগ
আওয়ামী লীগ ৩০টি আসনে তাদের প্রার্থী প্রত্যাহারের বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হয়েছে, যাতে জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থীদের ক্ষমতাসীন দলটির প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না হয়। তবে সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ৪০টি আসনে সহজ জয়ের দাবি করেছে বলে গতকাল শুক্রবার রাতে দুই দলের প্রতিনিধিদলের বৈঠকে উপস্থিত সূত্র জানিয়েছে। বহুল আলোচিত এ ইস্যুতে আওয়ামী লীগ নেতারা দলের সভাপতি শেখ হাসিনার মতামত জানতে আজ তার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে উভয় দলের অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে। সভাপতি নির্দেশনা দেওয়ার পর আওয়ামী লীগ ও জাপা নেতারা চূড়ান্ত বৈঠক করে আজ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন। সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদল এবং জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর নেতৃত্বে দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ দুই সদস্যের প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেন। জাপার অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছানো না গেলে সেটির দায় নিতে না চাওয়ায় দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের বৈঠকে অংশ নেননি। গতকাল রাতের বৈঠকের পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য জাপার বেশ কয়েকজন কো-চেয়ারম্যান চুন্নুর বাসায় বৈঠক করেন। জাপার একজন নেতা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আওয়ামী লীগের যেসব নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবেন, তাদের প্রত্যাহারের বিষয়ে ক্ষমতাসীন দলটি রাজি হয়নি। এর অর্থ জাপা নেতাদের আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। আওয়ামী লীগও চায় জাতীয় পার্টির ২৯০ জন প্রার্থীর সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক, যাতে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়। বর্তমান সংসদে জাতীয় পার্টির ২৭ জন সংসদ সদস্য রয়েছেন। আগামীকাল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন হওয়ায় আজই এই বিষয়টি চূড়ান্ত করতে হবে। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি ইতোমধ্যে যথাক্রমে ২৯৮ ও ২৮৭ আসনে তাদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৬ আসনে আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী দেয়নি, যেখানে নির্বাচন করেছে জাপা প্রার্থীরা।
আওয়ামী লীগ ৩০টি আসনে তাদের প্রার্থী প্রত্যাহারের বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হয়েছে, যাতে জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থীদের ক্ষমতাসীন দলটির প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না হয়।
জয়পুরহাটে উত্তরা মেইল ট্রেনের বগিতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা
জয়পুরহাটে উত্তরা এক্সপ্রেস মেইলের চলন্ত ট্রেনের একটি বগিতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার মধ্য রাতে জয়পুরহাট স্টেশন এলাকায় এ আগুনের ঘটনা ঘটে। আগুনে ট্রেনের বগির কয়েকটি সিট পুড়ে যায়। সান্তাহার রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুক্তার হোসেন জানান, রাজশাহী স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা পার্বতীপুরগামী 'উত্তরা এক্সপ্রেস' ট্রেনটি জয়পুরহাট স্টেশনে পৌঁছানো মাত্র একটি বগিতে আগুন দেখে স্টেশনে প্লাটফর্মে থাকা যাত্রীরা। পরে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা আগুন নিভিয়ে ফেলেন। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ধারণা করা হচ্ছে জয়পুরহাট স্টেশনে থামার আগ মুহূর্তে ট্রেনের বগিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। তিনি আরও বলেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। তদন্তের পর বিস্তারিত জানাতে পারব।
জয়পুরহাটে উত্তরা এক্সপ্রেস মেইলের চলন্ত ট্রেনের একটি বগিতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
প্রকৌশলী আকবর ও বিপ্লবের মুক্তি দাবি পেশাজীবী পরিষদের
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মো. বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব ও জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের যুগ্ম-আহবায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর মোল্লাকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে তাদের মুক্তি দাবি করেছে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ। আজ শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে পেশাজীবী পরিষদ এ দাবি জানায়। বিবৃতিতে বলা হয়, মো. বিপ্লবুজ্জামানকে বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে পেশাজীবী পরিষদের আলোচনা সভা শেষে বাসায় ফেরার পথে শাহবাগ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রকৌশলী আলী আকবর মোল্লাকে আজ সকালে টঙ্গী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও সদস্যসচিব সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরী বিবৃতিতে বলেন, 'একের পর এক পেশাজীবী নেতাদের গ্রেপ্তার করে পেশাজীবীদের মধ্যে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে।' বিবৃতিতে ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, গণতন্ত্রের পোশাকে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করে চলেছে সরকার। মানুষের কথা বলার অধিকারও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। পুলিশ বাহিনীকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করা হয়েছে, ব্যবহার করা হচ্ছে ভিন্নমত দমনে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি তারা সব নাগরিকের জান, মাল ও সম্মানসহ সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। 'বর্তমান সরকারের আমলে পেশাজীবীরা ন্যূনতম সম্মান ও নিরাপত্তা পাচ্ছেন না' উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, 'ইঞ্জিনিয়ার আকবর ও বিপ্লবই নয়, ইতোমধ্যে অন্তত আরও ৩৫ জন পেশাজীবীকে বিনা কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে আছেন ৮০ বছর বয়সী আইনজীবী সৈয়দ আজহারুল কবির ও ব্যারিস্টার সৈয়দ ইজাজ কবির, কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুরের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ইনকিলাবের সাংবাদিক শামসুল হুদা লিটন, চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মইনুল হোসেন সাদিক ও অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ, ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, গাইনোকোলজিস্ট ডা. ফাতেমা সিদ্দিকী, ডা. আতিকুল ইসলাম, দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জাহিদুল কবির জাহিদ, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অধ্যক্ষ জাকির হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ হোসাইন, সুপ্রিম কোর্ট বারের অ্যাডভোকেট মনজুরুল আলম সুজন, অ্যাডভোকেট নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ, অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হাসান মিলন, অ্যাডভোকেট জুয়েল মুন্সি সুমন প্রমুখ। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'আমরা অবাক বিস্ময়ে দেখলাম একই হাতকড়ায় দুই আইনজীবীকে আদালতে নেওয়া হলো। সম্পর্কে তারা পিতা-পুত্র। একজন প্রায় আশি বছর বয়সী বয়োজ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ আজহারুল কবির। প্রবীণ এ আইনজীবীকে জামিন তো দেওয়া হয়নি, উল্টো রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। ভিন্নমতের কারণে পিতার সঙ্গে ব্যারিস্টার সৈয়দ ইজাজ কবিরকেও গ্রেপ্তারের পর দুই মামলায় ৬ দিন রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।' বিবৃতিতে পেশাজীবী দুই নেতা বলেন, 'এভাবে পেশাজীবীদের বিনা অভিযোগে এবং বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দেওয়ার মাধ্যমে একটি ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। পেশাজীবীরা এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। বিরোধীমতের হাজারো নেতাকর্মী আজ ঘর ছেড়ে, বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের অনেকের বন-জঙ্গলে দিনাতিপাত করার খবর আমরা গণমাধ্যমে পেয়েছি।' 'সরকার দেশ পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে' উল্লেখ করে তারা বলেন, 'এভাবে পেশাজীবীদের হেনস্থা অব্যাহত থাকলে দেশের কৃতি ও মেধাবী সন্তানরা দেশে থাকতে চাইবে না। তাই আমরা পেশাজীবীসহ ভিন্নমতের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধ, দেশে গণতন্ত্র, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা, ভোটাধিকার, মানবাধিকার, বিচারালয়ের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।'
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মো. বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব ও জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের যুগ্ম-আহবায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর মোল্লাকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে তাদের মুক্তি দাবি করেছে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ।
আওয়ামী লীগ ছাড়া কারো বাসযোগ্য নেই দেশ: রিজভী
আওয়ামী লীগ ছাড়া দেশ কারও বাসযোগ্য নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ের বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেছেন। রিজভী বলেন, 'আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালে বিনা ভোটে অটোপাস এবং ২০১৮ সালে মধ্যরাতে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় এলেও, এবার আর কোনো রাখ-ঢাক নেই তাদের। লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে প্রকাশ্যে আসন বাটোয়ারা করে যাচ্ছেন।' তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনার পরিষদবর্গ-দলদাস-আজ্ঞাবহরা ব্যস্ত কীভাবে পাতানো নির্বাচন নিয়ে জনগণ ও বিদেশিদের চোখে ধুলো দেওয়া যাবে। একদল উচ্চ শিক্ষিত তথাকথিত আত্মা ও ব্যক্তিত্ব বিক্রি করা বুদ্ধিজীবী ব্যস্ত নির্বাচনে নৌকা জিতবে কত আসনে সেই হিসাব নিয়ে। প্রশাসন ব্যস্ত কীভাবে নির্বাচন করলে জনগণ বুঝতে পারবে না যে, এটা পাতানো নির্বাচন সেই কৌশল নিয়ে।' 'ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ব্যস্ত শেখ হাসিনার হাতে জিম্মি জনগণের মহাবিপদের সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কীভাবে বাড়ানো যায়, সেই কৌশল নিয়ে। আর জনগণ লড়াই করছে জীবন বাঁচানোর যুদ্ধে। এর মধ্যে ধেয়ে আসছে প্রলয়ঙ্করী বিপর্যয়। বেপরোয়া ও নজিরবিহীন আওয়ামী লুটপাটে ধ্বংস হয়ে গেছে বাংলাদেশের অর্থনীতি,' যোগ করেন তিনি। 'এ অবস্থায় কার্যত দেউলিয়াত্ব ঘোষণার অপেক্ষা মাত্র' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সারা দেশ ধাবিত হচ্ছে নিশ্চিত ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির দিকে। লুটপাট ও দুর্নীতি করে ব্যাংকিং সেক্টর ফোকলা করে দিয়েছে আওয়ামী লুটেরা গোষ্ঠী। টাকার ঘাটতির কারণে দেশের শরিয়াহভিত্তিক ৫ ব্যাংকের আর্থিক লেনদেন সেবা বন্ধের উপক্রম। দেশের জনগণ জানে, এই ব্যাংকগুলো শেখ পরিবারের ক্যাশিয়ার হিসেবে সর্বমহলে পরিচিত। একটি রাষ্ট্রীয় সংস্থার সহযোগিতায় শরিয়াহভিত্তিক  লাভজনক ব্যাংকগুলোর মালিক, চেয়ারম্যান, পরিচালকদের চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে দখলের ইতিহাস রীতিমত রোমহর্ষক।' মূল্যস্ফীতি ও ডলার সংকটের প্রসঙ্গ তুলে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, 'অর্থ পাচার করে বিদেশে গাড়ি বাড়ি ও সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে। সিঙ্গাপুরসহ দেশে দেশে শ্রেষ্ঠ ধনীর তালিকাভুক্ত হচ্ছে। দেশে-বিদেশে বিলাসী জীবনযাপন করছে। আর অন্যদিকে গরিব আরও গরীব হচ্ছে। মানুষ সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে। বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, করোনা উত্তরকালে প্রায় ৪ কোটি মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়ে পড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের উচ্চমূল্যের যাঁতাকলে মানুষের নাভিশ্বাস। অর্থনীতি আজ মহাসংকটে নিমজ্জিত। রাষ্ট্রযন্ত্র অকার্যকর হয়ে পড়েছে।' 'আওয়ামী লীগ ছাড়া কারো বাসযোগ্য নেই দেশ' মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'দুর্ভিক্ষের এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে হলে প্রতিটি মানুষকে রাজপথে নেমে মাফিয়া সরকারের ক্ষমতায় থাকার সিলমোহরের নির্বাচন বানচাল করে দিতে হবে। এখন আর কারো ঘরে বসে থাকার পরিস্থিতি নেই। প্রতিবাদে নামতেই হবে।' রিজভী বলেন, সবকিছু উজাড় করে দেওয়া শেখ হাসিনা সরকারকে জোড়াতালির ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে পার্শ্ববর্তী একটি দেশের পরিকল্পনায় দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জঙ্গি নাটক মঞ্চস্থ করে বিশ্বকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পাশের দেশের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগের সময়ের মতো আগামী ৭ জানুয়ারির ভাগ বাটোয়ারার নির্বাচনের আগে জঙ্গি নাটক মঞ্চস্থ করার পরিকল্পনা করছে।' আরওঢাকায় বিজয় দিবস র‍্যালির অনুমতি চেয়ে ডিএমপিকে বিএনপির চিঠি তিনি বলেন, 'এ দেশের মানুষ ধর্মভীরু, কিন্তু উগ্র নয়। দেশের অসংখ্য ছেলেমেয়ে ইসলাম ধর্মের শিক্ষা নিতে কওমি, আলিয়া, সুন্নি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। এখন পর্যন্ত এসব মাদ্রাসায় কোনো ধরনের উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ড কিংবা সন্ত্রাসী কার্যক্রম দেখা যায়নি। অথচ আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী ছাত্রলীগ বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলো চর দখলের মতো দখল করে রেখেছে। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ফেসবুকে ভারতবিরোধী লেখার জন্য বুয়েটের ছাত্র আবরারকে হত্যা করেছে। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর বারবার হামলা করে তাদের আহত করেছে।' এ সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, 'এভাবে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা দেশের আপামর জনসাধারণকে জিম্মি করে রেখেছে। অথচ, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রকৃত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার না করে, পাশের দেশের নির্দেশনায় জঙ্গি নাটক মঞ্চস্থ করে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টায় মরিয়া। 'শুধু ফ্যাসিস্ট সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে দেশের ইসলামপ্রিয় আলেমদের বিশ্বে জঙ্গি হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমি গণতান্ত্রিক বিশ্বের কাছে আহ্বান করছি আপনারা শেখ হাসিনা ও তার প্রভুদের প্রপাগান্ডাকে বিশ্বাস না করে আওয়ামী লীগের একতরফা সাজানো ডামি নির্বাচন নিয়ে সোচ্চার হোন এবং এ দেশের জনগণের একান্ত চাওয়া গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসুন,' যোগ করেন তিনি। বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'রাষ্ট্রীয় অর্থের বিনিময়ে খরিদ করা কুইনস পার্টি, ভূঁইফোড় পার্টি, তৃণভোজী পার্টি, ডামি পার্টি এবং বিভিন্ন দল থেকে লোকজন হায়ার করে কথিত নির্বাচনী নাটক মঞ্চস্থ করার তামাশায় কেউ কোনোভাবে অংশ নেবেন না। ভোটকেন্দ্রে যাবেন না, ভোট দেবেন না। "আমরা আর মামুরা" মার্কা এই নির্বাচনের প্রার্থী বা তাদের পক্ষের লোকদের ত্যাগ করুন। বিএনপি বা অঙ্গ-সংগঠনের কোনো নেতাকর্মীকে যদি ভুয়া নির্বাচনের কোনো প্রার্থীর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা, প্রচার-প্রচারণায় প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ অংশগ্রহণ বা সমর্থন বা ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' আগামীকাল বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা করে রিজভী বলেন, 'নেতাকর্মীদের যাদের পক্ষে সম্ভব তারা আগামীকাল সকাল ৭টার মধ্যে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ যাবেন। সেখানে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ শেষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ এবং পরে দুপুর ১টায় নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শুরু হবে বিজয় র‍্যালি।' ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপির আয়োজনে এ বিজয় র‌্যালি মগবাজার গিয়ে শেষ হবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, 'এ দেশের মানুষ ধর্মভীরু, কিন্তু উগ্র নয়। দেশের অসংখ্য ছেলেমেয়ে ইসলাম ধর্মের শিক্ষা নিতে কওমি, আলিয়া, সুন্নি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। এখন পর্যন্ত এসব মাদ্রাসায় কোনো ধরনের উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ড কিংবা সন্ত্রাসী কার্যক্রম দেখা যায়নি। অথচ আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী ছাত্রলীগ বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলো চর দখলের মতো দখল করে রেখেছে। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ফেসবুকে ভারতবিরোধী লেখার জন্য বুয়েটের ছাত্র আবরারকে হত্যা করেছে। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর বারবার হামলা করে তাদের আহত করেছে।' এ সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, 'এভাবে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা দেশের আপামর জনসাধারণকে জিম্মি করে রেখেছে। অথচ, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রকৃত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার না করে, পাশের দেশের নির্দেশনায় জঙ্গি নাটক মঞ্চস্থ করে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টায় মরিয়া। 'শুধু ফ্যাসিস্ট সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে দেশের ইসলামপ্রিয় আলেমদের বিশ্বে জঙ্গি হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমি গণতান্ত্রিক বিশ্বের কাছে আহ্বান করছি আপনারা শেখ হাসিনা ও তার প্রভুদের প্রপাগান্ডাকে বিশ্বাস না করে আওয়ামী লীগের একতরফা সাজানো ডামি নির্বাচন নিয়ে সোচ্চার হোন এবং এ দেশের জনগণের একান্ত চাওয়া গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসুন,' যোগ করেন তিনি। বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'রাষ্ট্রীয় অর্থের বিনিময়ে খরিদ করা কুইনস পার্টি, ভূঁইফোড় পার্টি, তৃণভোজী পার্টি, ডামি পার্টি এবং বিভিন্ন দল থেকে লোকজন হায়ার করে কথিত নির্বাচনী নাটক মঞ্চস্থ করার তামাশায় কেউ কোনোভাবে অংশ নেবেন না। ভোটকেন্দ্রে যাবেন না, ভোট দেবেন না। "আমরা আর মামুরা" মার্কা এই নির্বাচনের প্রার্থী বা তাদের পক্ষের লোকদের ত্যাগ করুন। বিএনপি বা অঙ্গ-সংগঠনের কোনো নেতাকর্মীকে যদি ভুয়া নির্বাচনের কোনো প্রার্থীর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা, প্রচার-প্রচারণায় প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ অংশগ্রহণ বা সমর্থন বা ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' আগামীকাল বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা করে রিজভী বলেন, 'নেতাকর্মীদের যাদের পক্ষে সম্ভব তারা আগামীকাল সকাল ৭টার মধ্যে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ যাবেন। সেখানে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ শেষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ এবং পরে দুপুর ১টায় নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শুরু হবে বিজয় র‍্যালি।' ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপির আয়োজনে এ বিজয় র‌্যালি মগবাজার গিয়ে শেষ হবে বলে জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ ছাড়া দেশ কারও বাসযোগ্য নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শরিকদের জন্য ৭ আসনের বেশি ছাড় নয়: কাদের
জোটের শরিকদের জন্য সাতটি আসনের বেশি ছাড় দেওয়া আওয়ামী লীগের জন্য সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ শুক্রবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান। ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আমাদের শরিক দল বলতে জাতীয় পার্টি তাদের নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করবে, ১৪ দলে কিছু আসনে নৌকা মার্কা আমরা দেবো। সাতটা নির্বাচনী এলাকায় নৌকা আমরা স্যাক্রিফাইস করতে পারব, গতকালই আমরা জানিয়ে দিয়েছি।' জোটের অন্যতম শরিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু সাতটির বেশি আসন ছেড়ে দেওয়ার দাবি করেছেন, বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'শুনেন, আরও অনেক শরিক দল আছে। তাদেরকে তো বোঝাতে হবে। কিন্তু যা হওয়ার হয়েছে। এর বাইরে আমাদের পক্ষে সম্ভব না।' স্বতন্ত্র প্রার্থী তুলে নিতে শরিকদের দাবির বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'নির্বাচন তো হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক, আমরা আমাদের দলীয় প্রার্থী যেখানে আছে, সেখানে স্বতন্ত্রের সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করে ইলেকশন করবে না, স্বতন্ত্র যদি জিতে জিতবে, আমরা জোর করে কারো বিজয় ছিনিয়ে আনব না।' শরিকরা নিশ্চিত বিজয়ের গ্যারান্টি চায় কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমরা কাউকে বিজয়ের গ্যারান্টি দিতে পারব না। আমি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, আমারও জেতার গ্যারান্টি নেই। আমার সঙ্গে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বী আছে। এখন কেউ যদি জিতে যায়, তাহলে তো আমাকেও হার মানতে হবে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা, প্রতিযোগিতা যেটা আছে, সেটা আমরা মেনে নিয়েছি।' ওবায়দুল কাদের বলেন, 'জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। এই অ্যালায়েন্সে আসনের ব্যাপারটা গৌণ, মুখ্য হচ্ছে রাজনৈতিক ব্যাপারটা।' টিআইবির সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'আমাদের দেশে যারা মুক্তবুদ্ধির চর্চা করেন বলে দাবি করেন, যারা মানবাধিকারের প্রবক্তা, যেমন: টিআইবি, ২৮ দল এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, তারপরেও এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক কেন হবে না, কারণ তারা জেনে-শুনে এটা করছে। বিএনপির ভাবাদর্শের, মতাদর্শের প্রবক্তা হয়ে তারা চোখ থাকিতে অন্ধ এমন একটা ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। আমরা টিআইবির কাছে জানতে চাই, অংশগ্রহণমূলক বলতে কী বোঝায়? ২৮টি দল অংশগ্রহণ করছে। বিএনপি অংশগ্রহণ না করলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না এটার অর্থটা কী? টিআইবি কি বিএনপির শাখা বা সমর্থক? একই সুরে কথা বলছে।' ওবায়দুল কাদের বলেন, মঈন খান (বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য) বলছে ভাগাভাগির নির্বাচন। কীসের ভাগাভাগি, বানরের পিঠা ভাগাভাগি নাকি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যেকোনো মূল্যে এই নির্বাচনকে আমরা সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হিসেবে একটা রেকর্ড আমরা রাখতে চাই। নির্বাচনই হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রাণ। কাজেই নির্বাচনব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক করার আমাদেরও দায়িত্ব আছে। আমাদের প্রার্থীদের মধ্যে যাদের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে, কারো ব্যাপারেই প্রভাবিত করার চেষ্টা করিনি, আর করবোও না।' 'বাংলাদেশে একটা ভালো দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে—এমন একটা নির্বাচন করার ব্যাপারে শেখ হাসিনা অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি পরিষ্কার বলেছেন যে, নির্বাচনের ব্যাপারে কোনো প্রকার ছাড় কাউকে দেওয়া হবে না। নির্বাচনে পক্ষপাতিত্ব করা হবে না। জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে—এটা আমরা সম্পূর্ণভাবে মেনে চলব। বিদেশি বন্ধুদের বলতে চাই, নির্বাচন নিয়ে কারো উদ্বেগের কোনো কারণ নেই', যোগ করেন তিনি।
জোটের শরিকদের জন্য সাতটি আসনের বেশি ছাড় দেওয়া আওয়ামী লীগের জন্য সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
জোটের শরিকদের জন্য ৭টি আসন ছাড়ার ঘোষণা আওয়ামী লীগের
আওয়ামী লীগ তাদের শরিক দলগুলোর জন্য সাতটি আসন ছেড়ে দেওয়া ঘোষণা দিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ নেতা ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টিকে তিনটি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলকে (জাসদ-ইনু) তিনটি এবং জাতীয় পার্টিকে (জেপি-মঞ্জু) একটি আসন ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আমির হোসেন আমু জানান, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেননকে বরিশাল-২, মুস্তফা লুৎফুল্লাহকে সাতক্ষীরা-১ এবং ফজলে হোসেন বাদশাকে রাজশাহী-২ আসন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, জাসদের হাসানুল হক ইনুকে কুষ্টিয়া-২, এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনকে বগুড়া-৪ এবং মোশাররফ হোসেনকে লক্ষ্মীপুর-৪ আসন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে জাতীয় পার্টির (জেপি-মঞ্জু) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে পিরোজপুর-২ আসন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এই সাতটি আসনের মধ্যে শুধুমাত্র কুষ্টিয়া-২ আসনে আগে থেকেই কোনো প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। জোট শরিকদের জন্য এই আসনগুলো ছেড়ে দিতে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবে ক্ষমতাসীন দলটি। তবে, আওয়ামী লীগের যে নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তাদের ব্যাপারে ক্ষমতাসীন দলের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না বলেই জানিয়েছে দলীয় সূত্র। গত ডিসেম্বর ১২ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'শরিকদের আপত্তি থাকলেও নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকবে। স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে দলীয় প্রার্থীদের অস্বস্তি অমূলক। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কোনো বিকল্প নেই। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার কারো সুযোগ নেই।'
আওয়ামী লীগ তাদের শরিক দলগুলোর জন্য সাতটি আসন ছেড়ে দেওয়া ঘোষণা দিয়েছে।
মন্ত্রীরা মানসম্মান খুইয়ে দেশে-বিদেশে অপপ্রচার চালাচ্ছেন: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা ৭ জানুয়ারি আরেকটি জালিয়াতির নির্বাচন করার জন্য বিরোধী দলকে নিষ্ঠুরভাবে দমনের পাশাপাশি মিথ্যাচার চালাচ্ছেন। নির্বাচন কণ্টকমুক্ত করতে তারা দেশে-বিদেশে নিজেদের মানসম্মান খুইয়ে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের যুক্তরাষ্ট্র 'ম্যানেজ' হয়ে যাওয়ার বক্তব্য ডাহা মিথ্যা। তাদের বক্তব্য সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা এটিকে 'ডিপ ফেক নিউজ' বলে অভিহিত করেছে। রিজভী বলেন, 'তারা কতখানি বেহায়া হলে পরে এহেন নির্ভেজাল মিথ্যা পারে তা নজিরবিহীন। যুক্তরাষ্ট্র ম্যানেজ নয় বরং তারা গণহারে বিরোধীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতনে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দুই মন্ত্রীর বক্তব্য কূটনৈতিক আচরণের ইতিহাসে এটি একটি বড় ধরনের কেলেঙ্কারি। অর্থবিত্ত, টাকা পাচার, অঢেল সম্পত্তির মালিক, গার্ড অব অনার, নিরাপত্তা বেষ্টনীর মায়া ভুলতে পারছেন না বলেই মিথ্যা, বানোয়াট ও অনৈতিক বক্তব্য দিতে তারা অনুতাপ বোধ করেন না।' 'ক্ষমতাসীনরা গণতন্ত্রকামী মানুষের চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজানোর আয়োজনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে' মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন মানুষ হত্যা করে সরকার উৎখাত করা যাবে না। দেশ ও আন্তর্জাতিকভাবে সবাই জানে যে, হত্যা, নিপীড়ন নির্যাতনের মাধ্যমে বিরোধী দল নিশ্চিহ্ন করার ধারাবাহিক কর্মকাণ্ড প্রধানমন্ত্রীর অবৈধ সরকারের সুপ্রতিষ্ঠিত নীতি। তিনি কিনা বিরোধী দলের উপর দোষ চাপাচ্ছেন।' প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, 'পিরোজপুর স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী নিহত হলেন নৌকার সমর্থকদের হামলায়। একটা 'চিটিং' নির্বাচন করতে নিজেরা নিজেদের হত্যা করছে—এর দায় কি আপনার নয়? এই কারসাজির নির্বাচনকে ঘিরে প্রায় প্রতিদিন হত্যার শিকার হচ্ছেন গণতান্ত্রিক সংগ্রামের কর্মীরা। মানিকগঞ্জের বিপ্লব হাসান বিপুল, কক্সবাজারে ৭ নভেম্বর বিএনপি নেতা জাগির হোসেন, নওগাঁর বিএনপি নেতা কামাল, বগুড়ার আব্দুল মতিনসহ নভেম্বর মাসেই ১৯/২০ জন বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। এদেরকে হত্যা করেছে আপনার তৈরি করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর দায় কি আপনার নয় প্রধানমন্ত্রী?' তিনি বলেন, 'পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নির্বাচন কমিশন, প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুধাবন করা কর্তব্য যে, তারা সাধারণ জনগণের কষ্টার্জিত টাকায় বেতন-ভাতা ভোগ করেন। এই দেশে এই সমাজেই তাদের বাবা-মা-স্ত্রী-সন্তান, স্বজন-পরিজন আপনজনের বসবাস। সাধারণ মানুষ সরকারের উৎপীড়ন-দুঃশাসন-জুলুম-নিপীড়ন-বাজার সিন্ডিকেটের করাল থাবায় অশান্তিতে জীবনযাপন করছেন। তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে, আগামী প্রজন্মের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা এদের মনের মধ্যে আসে না। এরা শুধুই ব্যক্তিস্বার্থে কাজ করছেন। শেখ হাসিনার সরকারই শেষ সরকার নয়। আজ হোক-কাল হোক বিদায় তাদের অনিবার্য পরিণতি। পৃথিবীর প্রতিটি স্বৈরাচারে পতন হয়েছে করুণভাবে। আজ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে জনগণের শত্রুতে পরিণত করা হয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মীকে জেলে পুরে, ঘরছাড়া করে পোড়ামাটি নীতির বাস্তবায়ন প্রকল্পে এই সকল প্রাতিষ্ঠানিক কর্তাব্যক্তিরা সহযোগিতা করছেন। গোটা দেশই এখন বিএনপিসহ বিরোধীদলগুলোর জন্য এক শ্বাসরুদ্ধকর কারাগারে পরিণত করা হয়েছে।' 'শেখ হাসিনার নীতি হলো যাকে যখন যতক্ষণ প্রয়োজন ততক্ষণ তাকে নীতিভ্রষ্ট-অন্যায় অপকর্ম সাধনে ব্যবহার করে ছুঁড়ে ফেলে দেয়া। পেছনে ফিরে দেখুন এমন উদাহরণ ভূরি ভূরি। সুতরাং পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নির্বাচন কমিশনসহ প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা কর্মচারীরা এখন শেখ হাসিনার পুতুল মাত্র।' দেশবাসীকে ভোট বর্জন করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'দেশের ১৮ কোটি মানুষ এবং গণতান্ত্রিক বিশ্বের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে আওয়ামী ডামি, আওয়ামী স্বতন্ত্র, আওয়ামী নৌকা, মনোনীত নৌকা, অনুমতিক্রমে স্বতন্ত্র, বিদ্রোহী নৌকা, আওয়ামী জোট, আওয়ামী পার্টির এক অদ্ভুত কিম্ভূতকিমাকার নির্বাচনের আয়োজন চলছে। একই ক্লাবের খেলা। খেলোয়াড়ও একই দলের। যেটা লাউ সেটাই কদু। নিজেরাই নিজেদের বিরোধী দল। ভোটারদের কাছে আহ্বান জবরদস্তি করলেও ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। ভোট বর্জন করুন। শেখ হাসিনার ভোটরঙ্গ রুখে দিন।'
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা ৭ জানুয়ারি আরেকটি জালিয়াতির নির্বাচন করার জন্য বিরোধী দলকে নিষ্ঠুরভাবে দমনের পাশাপাশি মিথ্যাচার চালাচ্ছেন। নির্বাচন কণ্টকমুক্ত করতে তারা দেশে-বিদেশে নিজেদের মানসম্মান খুইয়ে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
দেশের বাইরের কোনো চাপ নেই, নিজেদের চাপে আছি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ বিদেশি কোনো চাপে নেই, তবে নিজেদের মধ্যেই সুষ্ঠু নির্বাচন করার চাপ আছে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীতে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে এক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'গণতন্ত্রের নিজস্ব মূল্যবোধের জন্যই আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমাদের নিজস্ব চাপের মধ্যে রয়েছি।' তিনি বলেন, সরকার অবাধ, সুষ্ঠু ও অহিংস নির্বাচন করতে চায়, বিদেশি দেশগুলো তা সমর্থন করছে। মোমেন বলেন, 'আমাদের চ্যালেঞ্জ এখন আরও বেশি ভোটার আনা।' একই সঙ্গে তিনি বলেন, 'বিএনপি যা করছে তা যুক্তরাষ্ট্র পছন্দ করছে না- তারা সহিংস কর্মকাণ্ডের আশ্রয় নিচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ বিদেশি কোনো চাপে নেই, তবে নিজেদের মধ্যেই সুষ্ঠু নির্বাচন করার চাপ আছে।
সভা-সমাবেশ বন্ধে ইসির সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন ও গণবিরোধী: রিজভী
আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের আগ পর্যন্ত প্রচারণা ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি আয়োজনের অনুমতি না দিতে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন ও গণবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। রিজভী বলেন, '৭ জানুয়ারি একটি তথাকথিত নির্বাচনের নামে ভাগ-বাটোয়ারার মাধ্যমে ডামি নির্বাচন আয়োজনের যে অপপ্রয়াস, সেটিকে পৃষ্ঠপোষকতা করতেই অথর্ব ও অযোগ্য নির্বাচন কমিশন জনবিদ্বেষী সিদ্ধান্তটি নিয়েছে।' তিনি আরও বলেন, 'এটি আবারও প্রমাণিত হয়েছে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর কেন সর্বজনীন অনাস্থা ও বিশ্বাসহীনতা বিরাজমান এবং সর্বাঙ্গীনভাবে পক্ষপাতদুষ্ট এই কমিশনের অধীনে কেন কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা ফেয়ার ইলেকশন সম্ভব নয়।' বিএনপির এই নেতা বলেন, 'ইতোপূর্বে নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধন ও ভুয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্দেশনা প্রতিপালন করেছে মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশন।' বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধের নব্য অপতৎপরতায় উদ্বেগ প্রকাশ করছি ও নিন্দা জানাচ্ছি, বলেন তিনি। রিজভী আশঙ্কা প্রকাশ করেন, গণতান্ত্রিক মত প্রকাশের অধিকারকে রুদ্ধ করার এই অশুভ উদ্যোগ বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কূটনীতিক সংকটকে আরও ঘনীভূত করে তুলবে। তিনি বলেন, 'দেশের মানুষের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে বিএনপির চলমান শান্তিপূর্ণ ও অহিংস আন্দোলন একটি সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার। সভা-সমাবেশ ব্যাহত করে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ও দাবি আদায়ের সংগ্রামের বিরুদ্ধে যে অবস্থান নিয়েছে নির্বাচন কমিশন, আমরা আশা করছি দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে তারা এটি প্রত্যাহার করবেন।' রিজভী আরও বলেন, 'ভোটে অংশগ্রহণ করা বা না করা; দুটি সিদ্ধান্তই দেশের প্রতিটি ভোটার ও রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার।' বিএনপি কখনোই নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিপক্ষে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে বিএনপির বিপুল বিজয় অনিবার্য ও অবশ্যম্ভাবী।'
আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের আগ পর্যন্ত প্রচারণা ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি আয়োজনের অনুমতি না দিতে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন ও গণবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সুনামগঞ্জ: আওয়ামী লীগ মনোনীতদের সামনে ‘দলীয় স্বতন্ত্র’ চ্যালেঞ্জ
দলীয়ভাবে মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে 'স্বতন্ত্র' হিসেবে দলীয় নেতাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা উন্মুক্ত করে দেওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন সুনামগঞ্জের চারটি আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা। এসব প্রার্থীদের মধ্যে কেউ দলীয় বিভক্তি নিয়ে উৎকন্ঠিত, কেউ আশা করছেন শেষ মুহূর্তে হয়তো পাল্টে যেতে পারে দলীয় অবস্থান। আর এ উৎকণ্ঠার কারণে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর আগেই বিধি ভেঙে বিরতিহীন জনসংযোগ করছেন তারা। হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জ জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসনের মধ্যে চারটি আসনেই নৌকা প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন প্রভাবশালী দলীয় নেতারা, যার মধ্যে দুজন মনোনয়নবঞ্চিত বর্তমান সংসদ সদস্যও আছেন। তবে একইসময়ে নির্ভার আছেন পরিকল্পনামন্ত্রী, সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও একই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এম এ মান্নান। সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত তাহিরপুর, ধর্মপাশা, জামালগঞ্জ ও মধ্যনগর উপজেলা নিয়ে গঠিত সুনামগঞ্জ-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনকে বাদ দিয়ে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নতুন সদস্য অ্যাডভোকেট রনজিত চন্দ্র সরকারকে। তবে মনোনয়নবঞ্চিত সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। একইসাথে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হওয়া সুনামগঞ্জ জেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি সেলিম আহমদও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে বর্তমান সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী এক নেতার স্বতন্ত্র প্রার্থীতায় এ আসনে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে আর ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে তিন প্রার্থীই আচরণবিধি ভেঙে বিরতিহীনভাবে জনসংযোগ করে যাচ্ছেন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কারণে কোনো চাপ নেই দাবি করে রনজিত চন্দ্র সরকার বলেন, 'আমি কোনো চাপ অনুভব করছি না। এলাকার মানুষ নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ।' সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই ও শাল্লা উপজেলা) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও প্রয়াত রাজনীতিবিদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী জয়া সেনগুপ্ত এবার মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জয়ার পরিবর্তে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন শাল্লা উপজেলার সদ্য পদত্যাগকৃত চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনের ভাই চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মাহমুদ (আল আমিন)। চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মাহমুদ বলেন, 'ঐতিহ্যগতভাবে দিরাই শাল্লার মানুষ নৌকার সমর্থক। এখানে আওয়ামী লীগে যতই অন্তর্দ্বন্দ্ব থাকুক না কেনো, নির্বাচন এলে সবাই নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যান। এবারও তাই হবে আশা করছি।' স্থানীয় আওয়ামী লীগের অন্তর্কোন্দলের জন্য সুনামগঞ্জ জেলা সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত সুনামগঞ্জ-৪ আসন গত দুই দফায় জাতীয় পার্টির জন্য ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। এবারও জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই গ্রুপের দুই নেতা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান। তবে দলীয় কোন্দল এড়াতে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরষ্কারপ্রাপ্ত কবি ড. মোহাম্মদ সাদিককে। ড. সাদিক ২০১৪ সালে নির্বাচন কমিশন সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ে অপরিচিত ড. সাদিক মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘণ করে নিজের পরিচিতিমূলক পথসভা ও জনসংযোগ করে যাচ্ছেন। তবে তার জন্য সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগ নেতা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ও সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। ড. সাদিক বলেন, 'তিনি (ইমন) বলেছেন যে এই আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়া হলে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, নয়তো সরে যাবেন। আমি আশা করছি মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জাতীয় পার্টির সাথে।' সুনামগঞ্জের ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা নিয়ে গঠিত সুনামগঞ্জ-৫ আসনে চার বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে ষষ্ঠবারের মতো তার বিজয়ের রাস্তায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত নেতা শামীম আহমদ চৌধুরী। সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে মুহিবুর রহমান মানিকের বিরুদ্ধে জনসমর্থন অর্জন করছেন আর জাতীয় নির্বাচনের আগে শামীমের অবস্থান মানিকের জন্য শক্ত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুহিবুর রহমান মানিকও মনে করেন যে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্য দলে বিভক্তি দেখা দিচ্ছে যা সরাসরি দলের ক্ষতি করছে। তিনি বলেন, 'জাতীয় নির্বাচনে দলীয় নেতাদের এভাবে প্রার্থীতা ছেড়ে দেওয়া দলের জন্য ক্ষতিকর। কেবলমাত্র স্থানীয় পর্যায়ে নয়, বরং জাতীয় পর্যায়ে। এ ব্যাপারে দলের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে কেন্দ্রের উচিত একটি নির্দেশনা দেওয়া।
দলীয়ভাবে মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে 'স্বতন্ত্র' হিসেবে দলীয় নেতাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা উন্মুক্ত করে দেওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন সুনামগঞ্জের চারটি আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা।
যেটা হচ্ছে সেটা নির্বাচন নয়, বানরের পিঠা ভাগাভাগি: মঈন খান
আসন ভাগাভাগির মধ্য দিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল আগেই নির্ধারণ করা হচ্ছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, যেটা হচ্ছে সেটা নির্বাচন নয়, বানরের পিঠা ভাগাভাগি। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সকালে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদনের আগে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। মঈন খান বলেন, 'আমরা স্বাধীনতার পর পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে এসে আজকে যেখানে দাঁড়িয়েছি সেখানে আমরা একই ঘটনা দেখছি। এখানে মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা নেই, এখানে মানুষের ভোটের অধিকার নেই, এখানে গণতন্ত্র নেই, এখানে একদলীয় শাসন কায়েম হয়েছে। এখানে রাতে ঘরে কোনো মানুষ থাকতে পারে না। এখানে ভিন্ন মতের কথা কেউ বলতে পারে না।' তিনি আরও অভিযোগ করেন, 'এখানে মানুষ গুম হচ্ছে, রাজনৈতিক বিরোধীদের হত্যা করা হচ্ছে এবং এখানে মানুষের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কাজেই আজকে আমরা জনগণকে নিয়ে একটি উদ্দেশ্যে সংগ্রাম করছি। এই সংগ্রাম ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়।' জনগণ আওয়ামী লীগ সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'এই সরকারের নৈতিক পরাজয় ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। তারা হয়তো বুলেট, টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে মানুষের মুখ বন্ধ করে রাখার চেষ্টা করতে পারে কিন্তু আমরা সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে বিগত দেড় বছর যাবত প্রতিবাদ করে এসেছি। এই প্রতিবাদ আমরা রাজপথে থেকে করে যাব—বাংলাদেশে কোনো একদলীয় সরকার থাকতে পারবে না। 'গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। মানুষ যেখানে যাকে খুশি তারা ভোট দেবে। এখানে দিনের ভোট রাতে হতে পারবে না। এখানে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া যাবে না। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের অন্তরের কথা,' যোগ করেন তিনি। মঈন খান আরও বলেন, 'আমরা চাই শান্তিপূর্ণ উপায়ে বাংলাদেশের এই রাজনৈতিক সংঘাতময় অচলাবস্থার শেষ হোক।' এ সময় সরকারকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'আপনারা যদি সেই নির্বাচনে জয়লাভ করেন, আমি সর্ব প্রথম আপনাদের অভিনন্দন জানাব।' তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের বাস্তবতা আজকে ভিন্ন। আপনারা মানুষকে ভয় পান। মানুষের ভোটকে আপনারা ভয় পান। সে জন্য আজকে এমন একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে আপনারা ভোট ভাগাভাগি নিয়ে ব্যস্ত। আজকে এখানে যেটা হচ্ছে সেটা নির্বাচন নয়। সেটা হচ্ছে বানরের পিঠে ভাগাভাগি। সেই কাজগুলো আপনারা প্রকাশ্যে করছেন। আপনারা জাতিকে কলঙ্কিত করেছেন। যে দেশ গণতন্ত্রের জন্য স্বাধীন হয়েছিল, সেই দেশে এই নির্বাচনের প্রহসন চলতে পারে না।' এক প্রশ্নের জবাবে মঈন খান বলেন, '৭ জানুয়ারির যে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে, সেটা কোনো নির্বাচন নয়। আপনারা প্রতিদিন পত্রিকায় দেখছেন এখানে ভোট ভাগাভাগি চলছে। এখানে যেটা চলছে তাতে স্পষ্ট প্রতীয়মান যে, নির্বাচনের ফলাফল ঢাকায় বসে নির্ধারণ করা হচ্ছে। ৭ তারিখে কোনো নির্বাচন হবে না। আজকে আমরা যেটা দেখতে পাচ্ছি, রাজধানীতে ভোটের সিট ভাগাভাগি করে ফলাফল নির্ধারিত হচ্ছে সেটা ৭ তারিখে শুধুমাত্র ঘোষণা করা হচ্ছে। '৭ তারিখে কোনো নির্বাচন হবে না, সেটা আজকে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে,' বলেন তিনি।
আসন ভাগাভাগির মধ্য দিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল আগেই নির্ধারণ করা হচ্ছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, যেটা হচ্ছে সেটা নির্বাচন নয়, বানরের পিঠা ভাগাভাগি।
নিক্সনের অভিযোগে কাজী জাফর উল্যাহকে শোকজ
ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর, চরভদ্রাসন) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহকে শোকজ করা হয়েছে। আজ বুধবার ফরিদপুর-৪ আসনে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন চৌধুরী এ শোকজ নোটিশ পাঠান। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার মধ্যে কাজী জাফর উল্যাহকে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কাছে সশরীরে উপস্থিত হয়ে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। কাজী জাফর উল্যাহ ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন আজ নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে কাজী জাফর উল্যাহর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ করেন। এ অভিযোগকে আমলে নিয়ে কাজী জাফর উল্যাহকে শোকজ করা হয়েছে। এর আগে, গত ২৯ নভেম্বর বিশাল গাড়ি বহর নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসায় স্বতন্ত্র প্রার্থী নিক্সনকেও শোকজ করেছিল নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। পরে ১ ডিসেম্বর নিক্সন সশরীরে কমিটির সামনে হাজির হয়ে শোকজের জবাব দেন। সেসময় নিক্সন কমিটির কাছে প্রতিশ্রুতি দেন যে, আগামীতে যাতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকবেন তিনি।
ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর, চরভদ্রাসন) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহকে শোকজ করা হয়েছে।
মন্ত্রী-এমপিরা হলফনামায় দেশকে শায়েস্তা খাঁর আমলে ফিরিয়ে নিয়েছেন: রিজভী
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের হলফনামায় সম্পদের হিসাব 'আলাউদ্দিন চেরাগের কাহিনীর মতো' বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ বুধবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ ব্রিফিংয়ে সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের হলফনামার চিত্র তুলে ধরে তিনি এ মন্তব্য করেন। রিজভী বলেন, 'আসন্ন একদলীয় পাতানো নির্বাচন উপলক্ষে মন্ত্রী-এমপি-ডামি-উচ্ছিষ্টভোগী স্বতন্ত্রদের হলফনামা পড়লে মনে হয় যেন আরব্য উপন্যাসের সেই বিখ্যাত আলাউদ্দিনের চেরাগ…কারোটা দেখলে মনে হয় সাদ্দামের বেহেস্তে তারা বসবাস করছেন। তাদের বাড়ি-গাড়ি, বিদেশে অভিজাত এলাকায় তাদের অ্যাপার্টমেন্ট, তাদের ডুপ্লেক্স সবকিছু মিলেই মনে হয় যে, তারা বেহেস্তে বসবাস করছেন।' তিনি বলেন, 'নিশিরাতের ভোট ডাকাত সরকারের ৫ বছর থেকে ১৫ বছরের মন্ত্রী-এমপি ও তাদের নেতারা অর্থ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন, অনেকে প্রায় আঙুল ফুলে কলাগাছ নয় বটগাছ হয়েছেন। তাদের স্ত্রী-সন্তান-শ্বশুররাও টাকার কুমিরে পরিণত হয়েছেন।' 'সাধারণ ব্যবসায়ীদের লোকসান হলেও আওয়ামী ফ্যাসিস্ট রাজনীতিকদের কোনো লোকসান নেই' মন্তব্য করে রিজভী বলেন, 'আওয়ামী রাজনীতি এমন এক ব্যবসা যেখানে কোনো ঝুঁকি নেই এবং লোকসান হওয়ারও কোনো আশঙ্কা নেই। যে ব্যবসাই করছেন তাতেই লাভ আর লাভ। শেয়ার ব্যবসায় তারা কেউ ক্ষতির মুখোমুখি হননি। কৃষিখামার ও মাছের ব্যবসাতেও বহু গুণ লাভ করেছেন। স্বামীদের ব্যবসা দেখাশোনা করতে গিয়ে স্ত্রীরাও কোটি কোটি টাকা অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছেন।' 'হলফনামা ধরে প্রতিদিন প্রাত্যহিক সংবাদপত্রে নির্বাচনের প্রার্থীদের সম্পদের যে বিবরণ প্রকাশিত হচ্ছে তা দেখে জনগণের চক্ষু চড়কগাছ অবস্থা। তারা ভাবতে থাকে আমরা কি একটা বাস্তব জগতে বাস করছি? এ যেন সেই রুপকথার জগত, নাকি কল্পনার স্বর্গরাজ্যে বাস করছি, এটাও সম্ভব। একেকজন মানুষের সম্পদ ২০০ গুণ, ৩০০ গুণ, ৪০০ গুণ ৫০০ গুণ, কেউ আবার পাঁচ বছরে ৭০০ গুণ সম্পদেরও মালিক হয়েছেন,' বলেন তিনি। রিজভী বলেন, 'অবস্থা এমন হয়েছে যে, টাকার পাহাড়ে ঘুমান মন্ত্রী-এমপি-নেতারা। যে মন্ত্রী-এমপি নিজেকে কৃচ্ছ্যতা সাধনের বরপুত্র বলে জাহির করতেন, কিংবা যিনি জনসমক্ষে সততার পরাকাষ্ঠ প্রদর্শনের নাটক করতেন, তাদের শঠতার বিভৎসভাবে জনগণের সামনে উন্মোচিত হয়েছে। যারা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তাদের প্রায় সবারই নগদ অর্থকড়ি-বিত্ত সম্পদ দ্বিগুণ থেকে প্রায় হাজার গুণ স্ফীত হয়েছে।' 'আওয়ামী জাদুর কাঠির ছোঁয়ায় কারও হয়েছে সম্পদের পাহাড়, কারো গাড়ির বহর। দশ বছর আগে যে মন্ত্রীর হলফনামায় হাজারের ঘরে ছিল বার্ষিক আয় তিনিও এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। সবাই জানি তাদের হলফনামায় সম্পদের সামান্যই প্রদর্শন করা হয়েছে। অবৈধ অর্থ, বিদেশে পাচারকৃত অর্থ, সেকেন্ড হোম, বিদেশে গচ্ছিত বেশুমার সম্পদের হিসাব নেই। যারা আওয়ামী লীগ করেন তাদের ব্রতই যেন লুটপাট করে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়া। লুটেরা রাজ্যের সম্পদ ছিটেফোঁটা মাত্র এই হলফনামায় উঠে এসেছে। এমপি-মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও অনেক তথ্য গোপন করছেন,' বলেন তিনি। রিজভী আরও বলেন, 'প্রতিটি হলফনামার অবস্থা তথৈবচ। হলফনামায় তারা যেসব সম্পদের কথা বলেছেন, এটা তো নগণ্য। আসলে বাস্তবে এর চাইতে আরও কত গুণ তাদের সম্পদ যেটা তারা আড়াল করেছেন। অর্থবিত্ত সম্পদের ছিটেফোঁটার হিসাব দিলেও, কোনো কোনো মিথ্যেবাদী মন্ত্রী-এমপিরা তাদের হলফনামায় দেশকে শায়েস্তা খাঁর আমলে ফিরিয়ে নিয়েছেন। যে শাসনামলে টাকায় ৮ মণ চাল পাওয়া যেত। শেখ হাসিনার আদর্শিক কিছু অটোপাস এমপি লুটের অর্থসম্পদ কম দেখাতে তাদের প্রায় সবাই গাড়ি, বাড়ি, জমি-জিরাত-খামার-বাড়িভাড়া, সোনা-দানা-অলংকারসহ সব কিছুর মূল্য অতি সামান্য দেখিয়েছেন, তাতে মনে হচ্ছে তারা এখনো শায়েস্তা খাঁর আমলে বাস করছেন।' তিনি উল্লেখ করেন, 'সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিকুর রহমান চৌধুরী হলফনামায় তার ১০০ ভরি স্বর্ণের দাম দেখিয়েছেন মাত্র এক লাখ টাকা। এ হিসাবে তার কাছে গচ্ছিত প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম পড়েছে এক হাজার টাকা, কুমিল্লা-৭ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত ২২ ভরি স্বর্ণের দাম দেখিয়েছেন ২১ হাজার টাকা। প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম দেখিয়েছেন ৯৫৫ টাকা। এটা কি পাগলে বিশ্বাস করবে।' 'আওয়ামী মাফিয়া রাষ্ট্রে এমপি বা মন্ত্রিত্ব যেন আলাদিনের চেরাগ' মন্তব্য করে রিজভী বলেন, 'চোখের পলকে উন্নতি, অর্থবিত্তের পাহাড় গড়ার নেপথ্য রহস্য জানে প্রতিটি মানুষ। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন তার ছোট্ট উদাহরণ। প্রতিটি মন্ত্রী-এমপির বিমূর্ত অবয়ব তিনি। প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পাওয়ার জন্য দেওয়া ৯৪ লাখ ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের হাতে তার মিন্টো রোডের ১১ নম্বর সরকারি বাসভবনে নির্মম মারধরের শিকার হয়েছেন পুলিশ সদস্যসহ তিন ভুক্তভোগী অসহায় ব্যক্তি। প্রতিমন্ত্রীর নিয়োগ বাণিজ্য ও গুন্ডামির এই খবর পত্র-পত্রিকা-টেলিভিশন-অনলাইনে ছড়িয়ে যাওয়ার পর টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে ১০ ডিসেম্বর ৭ জনের কাছ থেকে নেওয়া সাড়ে ৯ লাখ টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হন প্রতিমন্ত্রী।' 'এসব অর্থ-সম্পদের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন একেবারেই অন্ধ' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জুলুমের প্রতিষ্ঠান দুদক বিরোধী দলের ওপর ধারালো তরবারি নিয়ে দৌড়াতে থাকে। আর আওয়ামী লুটেরা গোষ্ঠী সম্পর্কে তারা নীরব, নিশ্চুপ। তখন তাদের চোখ অন্ধ হয়ে যায়।' 'দুদককে দলকানা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। তাদের কাজ হলো খুঁজে খুঁজে বিএনপি ও ভিন্নমতের ব্যক্তিদের ঘায়েল করা। রাজনৈতিক নিপীড়নের হাতিয়ারে পরিণত করা হয়েছে এই তথাকথিত স্বাধীন প্রতিষ্ঠানটিকে,' যোগ করেন তিনি। রিজভী বলেন, 'বাস্তবতা হলো মন্ত্রী-এমপি-নেতাদের এই সম্পদ, এই টাকার পাহাড় কীভাবে গড়ে উঠেছে, আয়ের উৎস কী, এসব নিয়ে শেখ হাসিনার মাথাব্যথা নেই। জবাবদিহিতা নেওয়ার কেউ নেই। কারণ, সবকিছু আওয়ামীময় নষ্টদের অধিকারে। বর্গীদের মতো লুটের রাজ্য ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে টপ টু বটম ব্যস্ত।' 'তারা জনগণের সম্পদ চেটেপুটে খেয়ে পেট মোটা করতে এসেছেন। লুটের শাসন স্থায়ী করতে খুন-গুম-হামলা-মামলা-গ্রেপ্তার মিথ্যা সাজা দেওয়া হচ্ছে। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এক তরফা নির্বাচনের নাটক করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে অন্ধ হয়ে পড়েছে,' যোগ করেন তিনি। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৪০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দাবি করে রিজভী বলেন, '৯টি মামলায় ৯২৮ জনের বেশি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।'
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের হলফনামায় সম্পদের হিসাব 'আলাউদ্দিন চেরাগের কাহিনীর মতো' বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
ঢাকায় বিজয় দিবস র‍্যালির অনুমতি চেয়ে ডিএমপিকে বিএনপির চিঠি
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানী ঢাকায় র‍্যালি করার অনুমতি চেয়ে ডিএমপির কাছে চিঠি দিয়েছে বিএনপি। আজ বুধবার বিকেলে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সদরদপ্তরে গিয়ে এ চিঠি দেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের প্রচার সম্পাদক মাহবুবুর রহমান খান। আরও১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় ব্যাপক জনসমাগম ঘটাতে চায় বিএনপি ডিএমপি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে নিতাই রায় সাংবাদিকদের জানান, ১৬ ডিসেম্বর বিএনপি বিজয় দিবস র‍্যালি করার পরিকল্পনা করেছে। র‍্যালিটি নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে মগবাজার ক্রসিংয়ের দিকে যাবে। বিজয় দিবসে দুপুর ১টায় বিএনপি র‍্যালি শুরু করতে চায় বলে জানান এই নেতা। ডিএমপি জানায়, বিএনপির আবেদন যাচাই-বাছাই করে পরে সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানানো হবে। পুলিশ অনুমতি না দিলে কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে নিতাই রায় বলেন, 'বৃহস্পতিবারের মধ্যে পুলিশ আমাদের চিঠির জবাব দেবে বলে আশা করছি।' আরওরোববার সকাল ১১টায় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের ঘোষণা বিএনপির তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে এমন সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে যে ইফতার পার্টির আয়োজন করতেও পুলিশের অনুমতি নিতে হয়। এটা হওয়া উচিত নয়।' গত ২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় পুলিশ অবরুদ্ধ করে রেখেছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিতাই রায় বলেন, 'এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। শিগগির সমাধান হবে।' যোগাযোগ করা হলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অপারেশন) মাহিদ উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা বিএনপির চিঠি পেয়েছি এবং ডিএমপি কমিশনার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।' গত ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে সারাদেশে মানববন্ধন করে বিএনপি। মানববন্ধন কর্মসূচিতে দলের মধ্যম সারির বেশ কয়েকজন নেতা যোগ দিলেও জ্যেষ্ঠ নেতাদের উপস্থিতি ছিল কম। সেদিন রাজধানীতে মানববন্ধন চলাকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভও করেন বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিজয় দিবসে কর্মসূচি দেওয়ার বিষয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব সিদ্ধান্তহীনতায় ছিলেন। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক 'বিজয় মিছিল' বের করার ঘোষণায় বিএনপি ১৬ ডিসেম্বর শোভাযাত্রা করার পরিকল্পনা করে। আরও১৮ ডিসেম্বর ঢাকায় বিজয় দিবসের মিছিল করবে আওয়ামী লীগ আরওবহু চেষ্টায় ভাঙা যায়নি বিএনপি, শাহজাহান ওমরের ঘটনায় অনেক কিছু ‘উন্মোচিত’ ডিএমপি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে নিতাই রায় সাংবাদিকদের জানান, ১৬ ডিসেম্বর বিএনপি বিজয় দিবস র‍্যালি করার পরিকল্পনা করেছে। র‍্যালিটি নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে মগবাজার ক্রসিংয়ের দিকে যাবে। বিজয় দিবসে দুপুর ১টায় বিএনপি র‍্যালি শুরু করতে চায় বলে জানান এই নেতা। ডিএমপি জানায়, বিএনপির আবেদন যাচাই-বাছাই করে পরে সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানানো হবে। পুলিশ অনুমতি না দিলে কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে নিতাই রায় বলেন, 'বৃহস্পতিবারের মধ্যে পুলিশ আমাদের চিঠির জবাব দেবে বলে আশা করছি।' আরওরোববার সকাল ১১টায় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের ঘোষণা বিএনপির তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে এমন সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে যে ইফতার পার্টির আয়োজন করতেও পুলিশের অনুমতি নিতে হয়। এটা হওয়া উচিত নয়।' গত ২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় পুলিশ অবরুদ্ধ করে রেখেছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিতাই রায় বলেন, 'এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। শিগগির সমাধান হবে।' যোগাযোগ করা হলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অপারেশন) মাহিদ উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা বিএনপির চিঠি পেয়েছি এবং ডিএমপি কমিশনার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।' গত ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে সারাদেশে মানববন্ধন করে বিএনপি। মানববন্ধন কর্মসূচিতে দলের মধ্যম সারির বেশ কয়েকজন নেতা যোগ দিলেও জ্যেষ্ঠ নেতাদের উপস্থিতি ছিল কম। সেদিন রাজধানীতে মানববন্ধন চলাকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভও করেন বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিজয় দিবসে কর্মসূচি দেওয়ার বিষয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব সিদ্ধান্তহীনতায় ছিলেন। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক 'বিজয় মিছিল' বের করার ঘোষণায় বিএনপি ১৬ ডিসেম্বর শোভাযাত্রা করার পরিকল্পনা করে। আরও১৮ ডিসেম্বর ঢাকায় বিজয় দিবসের মিছিল করবে আওয়ামী লীগ আরওবহু চেষ্টায় ভাঙা যায়নি বিএনপি, শাহজাহান ওমরের ঘটনায় অনেক কিছু ‘উন্মোচিত’ তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে এমন সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে যে ইফতার পার্টির আয়োজন করতেও পুলিশের অনুমতি নিতে হয়। এটা হওয়া উচিত নয়।' গত ২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় পুলিশ অবরুদ্ধ করে রেখেছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিতাই রায় বলেন, 'এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। শিগগির সমাধান হবে।' যোগাযোগ করা হলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অপারেশন) মাহিদ উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা বিএনপির চিঠি পেয়েছি এবং ডিএমপি কমিশনার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।' গত ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে সারাদেশে মানববন্ধন করে বিএনপি। মানববন্ধন কর্মসূচিতে দলের মধ্যম সারির বেশ কয়েকজন নেতা যোগ দিলেও জ্যেষ্ঠ নেতাদের উপস্থিতি ছিল কম। সেদিন রাজধানীতে মানববন্ধন চলাকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভও করেন বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিজয় দিবসে কর্মসূচি দেওয়ার বিষয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব সিদ্ধান্তহীনতায় ছিলেন। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক 'বিজয় মিছিল' বের করার ঘোষণায় বিএনপি ১৬ ডিসেম্বর শোভাযাত্রা করার পরিকল্পনা করে। আরও১৮ ডিসেম্বর ঢাকায় বিজয় দিবসের মিছিল করবে আওয়ামী লীগ আরওবহু চেষ্টায় ভাঙা যায়নি বিএনপি, শাহজাহান ওমরের ঘটনায় অনেক কিছু ‘উন্মোচিত’ আরওবহু চেষ্টায় ভাঙা যায়নি বিএনপি, শাহজাহান ওমরের ঘটনায় অনেক কিছু ‘উন্মোচিত’
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানী ঢাকায় র‍্যালি করার অনুমতি চেয়ে ডিএমপির কাছে চিঠি দিয়েছে বিএনপি।
১০ মামলায় মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদন
রাজধানীর পল্টন থানায় ৬টি এবং রমনা থানার ৪টিসহ মোট ১০ মামলায় মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে জামিন আবেদন করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত ২৮ অক্টোবর পল্টন ও রমনা থানায় এসব মামলা করে পুলিশ। পুলিশ কনস্টেবল পারভেজ হত্যা, গাড়ি ভাঙচুর, পুলিশকে মারপিট, অস্ত্র ছিনতাই এবং পুলিশের কাজে বাধা দেওয়াসহ নাশকতার অভিযোগে দুই থানায় এসব মামলা করা হয়। আজ বুধবার ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন মির্জা ফখরুলের আইনজীবী জয়নুল আবেদিন মেজবাহ। আজ পল্টন থানায় দায়েরকৃত ৬টি মামলার জামিন আবেদনের ওপরে শুনবেন মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী। অন্যদিকে রমনা থানার ৪টি মামলার ওপর জামিন আবেদন শুনবেন মহানগর হাকিম মো. শফি উদ্দিন। এদিকে মির্জা ফখরুল গত ২৯ অক্টোবর থেকে প্রধান বিচারপতির বাসা ভাঙচুরের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেল হাজতে আটক আছেন। ওই মামলায় মূখ্য মহানগর হাকিম মহানগর দায়রা জজ এবং হাইকোর্ট তার জামিন আবেদন ইতোপূর্বে নাকচ করেছেন।
রাজধানীর পল্টন থানায় ৬টি এবং রমনা থানার ৪টিসহ মোট ১০ মামলায় মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে জামিন আবেদন করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রওশন এরশাদ দলের কেউ না, প্রধান পৃষ্ঠপোষক আলংকারিক পদ: জাপা মহাসচিব
রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রধান পৃষ্ঠপোষক, তিনি দলীয় কোনো পদ হোল্ড করেন না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। আজ বুধবার দুপুরে বনানীতে জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, 'জোট-মহাজোটের বিষয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনে কোনো দরখাস্ত করি নাই। আরপিও অনুযায়ী যদি জোট-মহাজোট করতে হয়, তাহলে একটা নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন কমিশনে দরখাস্ত দিয়ে জানিয়ে দিতে হয়। আমরা জানাইনি কারণ আমরা প্রথম থেকেই জোট-মহাজোটে যাওয়ার সিদ্ধান্তে নাই।' তিনি বলেন, 'গত রাতের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজন নেতাদের সাঙ্গে আমরা অনেকক্ষণ আলাপ করেছি, খোশ-গল্প করেছি। নির্বাচন কীভাবে, যাতে ভালোভাবে হয়। ভোটাররা কীভাবে আসবে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কী হবে, প্রশাসনের কী ভূমিকা থাকবে, শৃঙ্খলা বাহিনীর কী ভূমিকা থাকবে, নির্বাচন কমিশনের কী ভূমিকা থাকবে, আওয়ামী লীগের কর্মীদের কী ভূমিকা থাকবে—এসব অনেক আলোচনা করেছি। 'তাদের কেউ বিশ্বাস না করলেও ভালো করে রাতে ভোজ দিয়েছেন। নৈশভোজ আমাদের খেতে দিয়েছেন, আমরা খেয়েছি। পেট ভরে খেয়েছি। কাজেই আমার মনে হয় না যে, উনারা যে বলছেন বিশ্বাস করেন না; বিশ্বাস না করলে কারও বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে এত আলাপ করে খাওয়াইতেন না নিশ্চয়ই,' যোগ করেন তিনি। অবিশ্বাসের কথা লোক দেখানো নাকি রাজনৈতিক বক্তব্য জানতে চাইলে জাপা মহাসচিব বলেন, 'অবিশ্বাসের কথা আমি বলিনি। যিনি বলছেন, তিনি সেটার উত্তর দিতে পারবেন। জাতীয় পার্টি সবাইকে বিশ্বাস করে।' আপনি কি প্রশ্ন করেছিলেন যে, এই ধরনের কথা আপনারা মিডিয়াতে কেন বলছেন—গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে চুন্নু বলেন, 'না, আমি কথাটা জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন মনে করি নাই। কারণ তাদের সঙ্গে যখন কথা হয়েছে, তাদের ব্যবহারে আমি আপ্লুত। তাদের কথা-বার্তায় আমি এত খুশি যে, এই কথা আর জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন মনে করি নাই।' তিনি আরও বলেন, 'আমরা নির্বাচনে এসেছি নির্বাচন করার জন্য, না করার জন্য না। নির্বাচন করার শর্ত হিসেবে আমাদের একটাই দাবি, নির্বাচনের পরিবেশ এমন হতে হবে যেন ভোটারদের আস্থা আসে। আর কোনো দাবি আমাদের নাই।' শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি নির্বাচনে থাকবে কি না জানতে চাইলে চুন্নু বলেন, 'আমরা নির্বাচন করতে এসেছি। নির্বাচন থেকে চলে যাওয়ার জন্য, নাটক করার জন্য আসি নাই। নির্বাচন করব এবং নির্বাচন করে আগামীতে ক্ষমতায় যাব সেই স্বপ্নেও আমরা বিভোর। আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে যাবে সে রকম চিন্তাই আমাদের মধ্যে আছে। কাজেই নির্বাচন থেকে চলে যাব কেন!' সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ওপর জাতীয় পার্টির বিশ্বাস বেড়েছে বলেও জানান দলটির মহাসচিব। জাতীয় পার্টি বলছে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করবে না, আবার আরেকটি পক্ষ বলছে, আসন ভাগাভাগির বিষয়ে সিদ্ধান্ত শিগগির চূড়ান্ত হবে—এ ব্যাপারে চুন্নু বলেন, 'আওয়ামী লীগের সঙ্গে মূলত নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।' তিনি বলেন, 'নির্বাচনের কৌশল হিসেবে, রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে সিটসহ যেকোনো বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। না-ও হতে পারে। সিদ্ধান্ত হতে পারে, না-ও হতে পারে। নির্বাচনী কৌশল হিসেবে রাজনীতিতে শেষ বলে কোনো কথা নেই।' জিএম কাদের সাহেবকে আমরা দীর্ঘ দিন দেখছি না, সরকারের সঙ্গে তার কোনো প্রকার মান-অভিমান চলছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'উনি তো এখনো আছেন পার্টি অফিসে। জিএম কাদের সাহেব মনে করেন আপনাদের সঙ্গে আমার খুব একটা ভালো সম্পর্ক। তাই আমাকে বলেছেন, তুমি উনাদের সঙ্গে কথা বলো। মান-অভিমান থাকবে কেন? আমরা তো নির্বাচনে যাচ্ছি, মান-অভিমান থাকলে কি নির্বাচনে যেতাম!' তিনি গণমাধ্যমের সামনে আসছেন না কেন, জানতে চাইলে দলটির মহাসচিব বলেন, 'আসবেন না কেন? আসার মতো কোনো প্রয়োজন তো উনি দেখছেন না। আমিই তো চালিয়ে যাচ্ছি উনার পক্ষে। 'উনি নিজে বলছেন এমন কথার সময় এখনো আসে নাই। অবশ্যই কথা বলার সময় এলে উনি নিজে বলবেন,' যোগ করেন চুন্নু। গতকাল রওশন এরশাদ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলেছেন, আমি নির্বাচনে যেতে চেয়েছিলাম, জিএম কাদের আমাকে যেতে দেয়নি। আপনাদের সঙ্গে জোট না করা হয় সেই আহ্বান জানিয়েছেন। বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে চুন্নু বলেন, 'উনাকে, উনার ছেলেকে এবং আরেকজনকে আপনাদের মাধ্যমে বারবার বলেছি। উনার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগতভাবে টেলিফোনে আলাপ হয়েছে। উনি নিজেই বলেছেন নির্বাচন করবেন এবং ফরম নেবেন। আমি বলেছি, আপনি নির্দেশ দিয়ে ফরম আমি আপনার বাসায় দিয়ে আসব। উনি বলেছেন লোক পাঠাবেন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন রাত ১০টা পর্যন্ত আমরা অপেক্ষায় ছিলাম। তারপর তিনি সংবাদ সম্মেলনে বললেন যে, নির্বাচনে যাবেন না। এখন দোষ কার আপনারা চিন্তা করবেন।' আপনারা বিভিন্ন সময় দাবি করে আসছেন দলের ভেতরে কোনো বিভক্তি নেই। বিষয়টা নিয়ে জানতে চাইলে জাপা মহাসচিব বলেন, 'আমি আবারও বলছি, দলে কোনো বিভক্তি নাই।' রওশন এরশাদ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলে এর কোনো অর্থ দাঁড়ায় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'না, এগুলো আমার দলের কিছু মিন করে না। তিনি বিরোধী দলের নেতা, সেই হিসেবে সংসদ নেত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। এর সঙ্গে জাতীয় পার্টির কোনো সম্পর্ক নাই। ন্যূনতম সম্পর্ক নাই।' দলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এলো কি না, জানতে চাইলে চুন্নু বলেন, 'সাংগঠনিকভাবে আমি কোনো দ্বন্দ্ব দেখি না। বিরোধী দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতেই পারেন, এ বিষয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নাই। আমি বা জিএম কাদের যেটা বলি সেটা হলো জাতীয় পার্টির কথা। 'আমি জানি না, এক দলের কাছে আরেক দলের নালিশ চলে কি না। এটা রাজনৈতিক কোনো সংস্কৃতিতে পড়ে কি না আমার নতুন করে স্টাডি করতে হবে,' তিনি বলেন। রওশন এরশাদ বলেছেন, আপনারা যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন তাতে তার কোনো সমর্থন নেই—এ ব্যাপারে তিনি বলেন, 'আমি বুঝি দলের কেউ যদি নেতৃত্বের বাইরে যায় তাহলে অনৈক্য। দলের কোনো নেতৃত্ব তো বাইরে যায়নি! উনি আমাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক, দলীয় কোনো পদ হোল্ড করেন না।' 'উনি দলের কেউ না। দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক; আলংকারিক পদ। নির্বাহী কোনো ক্ষমতা তার নেই,' যোগ করেন তিনি।
রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রধান পৃষ্ঠপোষক, তিনি দলীয় কোনো পদ হোল্ড করেন না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
এই ইলেকশনে গণতন্ত্র আরও পারফেক্ট হবে: কাদের
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এ কথা বলেন। বাসে ট্রাকে আগুন দিয়ে, ট্রেনে নাশকতা করে, আগুন-সন্ত্রাস করে বিএনপি দেশে কোন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় প্রশ্ন তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'এটা নির্বাচন বিরোধী ষড়যন্ত্র। দেশে ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, নাশকতার মাধ্যমে এই নির্বাচনকে বানচাল করতে আজকে তারা গভীর ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। কিছু মেকওভার প্ল্যানও আছে তাদের। তারা চায় গুপ্ত হত্যা, গুপ্ত হামলা। আজকে বাসে-ট্রেনে আগুন দিয়ে নাশকতা সৃষ্টি বিএনপি ও তার দোসররা করতে চায়। 'আমরা সতর্ক পাহারা আরও জোরদার করছি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দায়িত্ব আছে, তারা তাদের দায়িত্ব পালন করবে। পাশাপাশি এই নির্বাচন আমাদের সফল করতে হবে। এই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে হবে এবং ব্যাপক ভোটারের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা, আমাদের পার্টি, আমাদের সমমনা দলগুলো সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে যাচ্ছি। এই নির্বাচনকে যাতে অবাধ, সুষ্ঠু এবং বিশ্বাসযোগ্য করা যায়। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতেই হবে,' যোগ করেন কাদের। তিনি আরও বলেন, 'দেশের মানুষকে ভয়-ভীতির মধ্যে রাখতে আজকে বিএনপি ও তার দোসররা যে চক্রান্ত করছে, এর মধ্যে ভোটার উপস্থিতি আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা দেশে তারা যতই নাশকতা করুক, মানুষ কিন্তু নির্বাচনমুখী হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ ভোট দিতে উন্মুখ। একটা উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।' কাদের বলেন, 'অনেকে ভেবেছিল যে, বড় একটা দল নেই, দুইটা দল নেই, নির্বাচনের পরিবেশ ম্লান হয়ে যাবে। ভোটার উপস্থিতি থাকবে না। ভোট উপলক্ষে সারা দেশে জাগরণের ঢেউ থাকবে না। এখন পর্যন্ত আমরা জানি, নির্বাচন কেন্দ্রিক উৎসবমুখর পরিবেশ দেশে অব্যাহত রয়েছে। ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে ব্যাপক ভোটারের উপস্থিতিতে একটা ভালো নির্বাচন হবে। আমরা ক্রমেই গণতন্ত্রকে ত্রুটিমুক্ত করার পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছি। এই ইলেকশনে গণতন্ত্র আরও পারফেক্ট হবে। 'আমাদের গণতন্ত্র বা পৃথিবীর কোনো দেশের গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত এ কথা কেউ দাবি করতে পারবে না। পারফেক্ট কেউ না, তবে এই পরিপূর্ণতা অর্জন করতে, পারফেক্ট হতে আমাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি যা আছে, এবার আমরা সেসব বিষয়গুলোকে দূর করে আমরা গণতন্ত্রের যাত্রা পথকে আরও মসৃণ করব,' বলেন তিনি। কাদের বলেন, 'অনেকে অনেক কথা বলবেন আমাদের অ্যালায়েন্স নিয়ে, জোট নিয়ে। বিভিন্ন ধরনের শঙ্কা, বিভিন্ন ধরনের গুঞ্জন, গুজবও আছে। গুজব তো এখন আমাদের রাজনীতির অংশই হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা সতর্ক আছি, গুজব-গুঞ্জন, সন্ত্রাস-সহিংসতা আমাদেরকে বিভ্রান্ত করতে পারবে না। আমরা বিচলিত হবো না। আমরা জেনে-শুনেই এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে এ নির্বাচন করতে যাচ্ছি। 'আমাদের সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা আমরা রক্ষা করব। বাংলাদেশের নির্বাচন প্রলম্বিত হবে, বিঘ্নিত হবে—এটা আমরা হতে দেবো না। নির্বাচন যথা সময়ে অনুষ্ঠিত হবে,' বলেন তিনি। নির্বাচনে জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে কাদের বলেন, 'বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কারও নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ আমরা রাখিনি। আওয়ামী লীগের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আছে, অন্যান্য দলও আছে। এবারের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কারও নির্বাচিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী এলাকায় চার জন প্রতিদ্বন্দ্বী। আমি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, আমার এলাকায়ও চার জন প্রতিদ্বন্দ্বী।' গতকালও আপনারা জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেছেন, তাহলে কি শঙ্কা দূর করা গেল না—গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'জাতীয় পার্টি আমাদের বলে গেছে তারা নির্বাচন করতে চায়। অ্যালায়েন্সে থাকতে চায়। তারা তো বলেনি যে, তারা সরে যাবে। শঙ্কা-আশঙ্কা থাকতে পারে। আমরাও এ ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হতে চাই, ১৭ তারিখের মধ্যে। সে পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করি, অস্বস্তির কোনো কারণ নেই। এখানে একটা নতুন অভিজ্ঞতা আমাদের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে এসেছে। নতুন অভিজ্ঞতা নেওয়ার, বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়ার। কাজেই, গণতন্ত্রের এটা আরেকটা নতুন অভিজ্ঞতা। এ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হলে শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এ নিয়ে অহেতুক অস্থিরতার কোনো কারণ নেই।' স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'স্বতন্ত্র প্রার্থী আমি স্পষ্ট বলেছি, যারা অ্যালায়েন্স হতে আলোচনা করছেন, তাদেরকেও আমরা জানিয়েছি—স্বতন্ত্র প্রার্থীদের আমরা উঠাতে পারব না। এখন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এখন নির্বাচন কমিশনের আওতায়। এখানে যে আচরণবিধি, তাতে আমরা জোর-জবরদস্তি করে উঠাতে পারি না। এটা আচরণবিধির বিরুদ্ধে যায়। কাজেই এ ব্যাপারে আমরা পরিষ্কার করে দিয়েছি। এখানে কোনো আপস করার সুযোগ নেই।'
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় ব্যাপক জনসমাগম ঘটাতে চায় বিএনপি
আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে ঢাকায় শোভাযাত্রা করে ব্যাপক জনসমাগম ঘটাতে চায় বিএনপি। দলের মহাসমাবেশ ভেস্তে যাওয়ার একদিন পর ২৯ অক্টোবর থেকে তালাবন্ধ থাকা নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকেও ওইদিন মিছিল বের করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, আত্মগোপনে থাকা দলের নেতাকর্মীরা শোভাযাত্রায় যোগ দেবেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু গতকাল রাতে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা বিজয় দিবসের শোভাযাত্রা বের করব।' গতকাল রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে সারাদেশে মানববন্ধন করেছে বিএনপি। মানববন্ধন কর্মসূচিতে দলের মধ্যম সারির বেশ কয়েকজন নেতা যোগ দিলেও জ্যেষ্ঠ নেতাদের উপস্থিতি ছিল কম। ওই দিন রাজধানীতে মানববন্ধন চলাকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভও করেন বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিজয় দিবসে কর্মসূচি দেওয়ার বিষয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব সিদ্ধান্তহীনতায় ছিলেন। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক 'বিজয় মিছিল' বের করার ঘোষণায় বিএনপি ১৬ ডিসেম্বর শোভাযাত্রা করার পরিকল্পনা করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির আরেক জ্যেষ্ঠ নেতা ডেইলি স্টারকে বলেন, শোভাযাত্রায় ঢাকা ও এর আশপাশের জেলা থেকে দলের নেতাকর্মীরা সমাবেশে অংশ নেবেন। আরওনির্বাচন প্রতিহতের চিন্তা বিএনপির, কৌশলে আসতে পারে পরিবর্তন তিনি আরও বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শুরু হবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে। ওই দিন থেকে বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলনের পরবর্তী ধাপ শুরু হবে। 'আমরা যদি ব্যাপক জনসমাগম ঘটাতে পারি, তাহলে চলমান আন্দোলনকে আরও বেগবান করার জন্য তা দলের নেতাকর্মীদের মনোবল বাড়াবে', যোগ করেন তিনি। বিএনপি নেতারা মনে করেন, গত ২৯ অক্টোবর থেকে প্রায় দেড় মাস ধরে বিএনপি ও সমমনা দলের ডাকা হরতাল ও দেশব্যাপী অবরোধ এখন অকার্যকর হয়ে পড়ছে। তা সত্ত্বেও দলটি বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যেতে চায়। বিএনপি আগামীকাল শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পালন করবে। এসব কর্মসূচি সফল হলে বিএনপি আগামী ২৫ ডিসেম্বর সারাদেশে নতুন করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। আরওবিএনপির সামনে ২ চ্যালেঞ্জ আরওসংলাপের সম্ভাবনা ক্ষীণ, গভীর সংকটে রাজনীতি তিনি আরও বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শুরু হবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে। ওই দিন থেকে বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলনের পরবর্তী ধাপ শুরু হবে। 'আমরা যদি ব্যাপক জনসমাগম ঘটাতে পারি, তাহলে চলমান আন্দোলনকে আরও বেগবান করার জন্য তা দলের নেতাকর্মীদের মনোবল বাড়াবে', যোগ করেন তিনি। বিএনপি নেতারা মনে করেন, গত ২৯ অক্টোবর থেকে প্রায় দেড় মাস ধরে বিএনপি ও সমমনা দলের ডাকা হরতাল ও দেশব্যাপী অবরোধ এখন অকার্যকর হয়ে পড়ছে। তা সত্ত্বেও দলটি বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যেতে চায়। বিএনপি আগামীকাল শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পালন করবে। এসব কর্মসূচি সফল হলে বিএনপি আগামী ২৫ ডিসেম্বর সারাদেশে নতুন করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে ঢাকায় শোভাযাত্রা করে ব্যাপক জনসমাগম ঘটাতে চায় বিএনপি।
যাত্রাবাড়ীতে বাসে ও বাঘায় ট্রাকে আগুন
রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি বাসে ও রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় একটি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তবে এতে কোনো হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে দুটি অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে দায়িত্বরত কর্মকর্তা রাফি আল ফারুক দ্য ডেইলি স্টারকে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রাত সোয়া ১১টার দিকে পুলিশ ফোন করে জানিয়েছে যাত্রাবাড়ী থানার পাশে কাজলা এলাকায় নবী টাওয়ারের সামনে দুর্বৃত্তরা একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পৌঁছানোর আগেই স্থানীয়রা আগুন নিভিয়ে ফেলে। যাত্রাবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজহারুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কাজলা এলাকায় পার্কিং করে রাখা বাসে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বাসটির কয়েকটি সিট পুড়ে গেছে।' রাফি আরও জানান, রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী বাঘা উপজেলায় একটি ট্রাকে আগুন লাগার তথ্য পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি বাসে ও রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় একটি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তবে এতে কোনো হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি।
নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে যা বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী হলেও, তার আসনে জয় লাভ করা সহজ হবে না—এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। আপনি কি আবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হতে চান—গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'প্রথমে হলো এমপি। এমপি হওয়াটা এত সহজ না। এটা ছেলের হাতের মোয়া না, টেলিভিশন টক-শো না। ওখানে লোকে ভোট দেয় এবং লোক খুব সেয়ানা। আমাদের দেশের লোক খুব পরিপক্ব। ভোটের সময় কাকে ভোট দেবে নিজেরা সিদ্ধান্ত নেয়। আর আমরাও চাই, আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো। প্রথম তারা সেটা দেখে। জেতাটা সহজ না। 'আমার (আসনে) এখানে সাত জন প্রার্থী। তো এটা সহজ না। যত সহজ মনে করেন, এমন না। আমার এখানে আওয়ামী লীগের একজন অত্যন্ত নিবেদিত কর্মী, যিনি ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করেছেন। আওয়ামী লীগের সম্মানিত পদে ছিলেন। পাওয়ারফুল পজিশনে ছিলেন। তিনি এখানে স্বতন্ত্র হিসেবে কাজ করছেন, নিশ্চয়ই তার কিছু ভোটার থাকবে। কারণ অত বছর ধরে যাদের সঙ্গে ওঠা-বসা করেছেন...তো এটা এত সহজ না। আমরা কোনোভাবেই এটাকে সহজভাবে গ্রহণ করি না। প্রথমে নির্বাচনে জিততে হবে। তারপর তো বাকিটুকু প্রধানমন্ত্রীর ওপর নির্ভর করবে। ওখানে কারও কোনো এখতিয়ার নেই,' যোগ করেন তিনি। আপনি আশাবাদী কতটা জানতে চাইলে মোমেন বলেন, 'আমি সব সময় আশাবাদী। আই অ্যাম অলওয়েজ অপটিমিস্ট।'
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী হলেও, তার আসনে জয় লাভ করা সহজ হবে না—এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
আমরা কোনো বিরোধী দলকে হয়রানি করছি না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কোনো বিরোধী দলকে হয়রানি করা হচ্ছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, যারা সন্ত্রাসী তাদের শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। মানবাধিকার সংগঠন রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস (আরএফকেএইচআর) আজ তাদের ওয়েবসাইটে বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছে, নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধীদের নির্যাতন করা হচ্ছে, জেলে দেওয়া হচ্ছে—এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোমেন বলেন, 'আমরা কোনো বিরোধী দলকে হয়রানি করছি না, কোনো নির্যাতন করি নাই। যারা সন্ত্রাসী, যারা মানুষের বাড়ি-ঘর জ্বালায়, জনগণের সম্পত্তি; বিশেষ করে বাস-ট্রেন-ট্রাক জ্বালানোর জন্য পাওয়া যাচ্ছে, জীবিত মানুষকে মারছে, তাদের আমরা শাস্তির আওতায় আনছি। আমরা কোনো রাজনৈতিক কারণে কাউকে হয়রানি করছি না। আমরা যাদের গ্রেপ্তার করছি তারা হচ্ছে সন্ত্রাসী।' 'আমাদের দেশের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা। আমরা আহ্বান করবো; যারা সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত আছেন, তারা সেটা পরিহার করে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হবেন,' বলেন মোমেন। আরএফকেএইচআর-এর বিবৃতিতে মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে, নির্বাচনের ব্যাপারেও তারা কথা বলেছেন—এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমি বিবৃতিটি দেখিনি। তাই বেশি কথা বলতে পারব না। মানবাধিকারের দিক থেকে বাংলাদেশ একটি আদর্শ দেশ। অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে এটা একটা আদর্শ দেশ। গাজার দিকে তাকান; কী ধরনের হিউম্যান রাইটস হচ্ছে? অন্যান্য উন্নত দেশেও মলে-ক্লাবে-স্কুলে মেরে ফেলে। আমরা তো সেই অবস্থায় না। আমাদের দেশে কোনো মলে আক্রমণ নাই, মসজিদে আক্রমণ নাই, ক্লাবে আক্রমণ করে মেরে ফেলে না। বিনা বিচারে কাউরে মারে না। 'আমরা সেই দেশ, যে দেশে ৩০ লাখ লোক প্রাণ দিয়েছে গণতন্ত্রের জন্য, মানবাধিকারের জন্য। আমরা সেই উত্তরাধিকার। আমাদের কাছ থেকে অন্যরা হিউম্যান রাইটস-জাস্টিস সম্পর্কে লেসন নেওয়া দরকার,' যোগ করেন মোমেন। আপনি পাঁচ বছর ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, এর মধ্যে আমরা অনেক সাফল্যের কথা জানি, ব্যর্থতা কী জানতে চাইলে মোমেন বলেন, 'সাফল্যের কথা বলতে পারি। ব্যর্থতা কী আমি জানি না।' রোহিঙ্গা সংকটের উল্লেখ করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'রোহিঙ্গা এখনো যায়নি, সেটার অগ্রগতি খুব ভালো। আমরা আশা করি, যে কোনো সময় রোহিঙ্গা ফেরত যাবে। তবে রোহিঙ্গা যে বাংলাদেশ চাইলে বা মিয়ানমার চাইলেই ফেরত যাবে তেমন না। অন্যান্য বহুবিদ প্রতিষ্ঠান...তারা চায় না রোহিঙ্গা ফেরত যাক। এটা বেশ সমস্যা আছে। আমার ধারণা, তারা চলে যাবে।' চীনের মধ্যস্থতায় আমরা ভেবেছিলাম নির্বাচনের আগেই কিছু রোহিঙ্গা ফিরে যাবে কিন্তু মিয়ানমারের পরিস্থিতি আরও খারাপ হলো—এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'পাইলট প্রজেক্টে আমরা অগ্রসর হয়েছিলাম। মিয়ানমার মোটামুটিভাবে রাজি হয়েছিল ওদের নিয়ে যাবে। মিয়ানমারের কয়েকজন কর্মচারী বাংলাদেশে এসেছেন। ওদের সঙ্গে কয়েকবার আলাপ করেছেন এবং রোহিঙ্গারা সবাই ওই দেশে যেতে চায়। একটা পর্যায়ে মোটামুটি চলে যাওয়ার উদ্যোগ হয়। তখন কিছু বিদেশি শক্তি আমাদের বললো, ওখানে পাঠায়েন না। বরং তাদের আমরা নিয়ে যাব কিন্তু তারা কেউ নেয়-টেয় নাই; অল্প কয়েকজন নিয়েছে। আর তারা বললো যে, আপনার দেশে ১৭০ মিলিয়ন লোক আছে, আরও এক মিলিয়ন নিলে আপনাদের কোনো ঝামেলা হবে না। ওদের বরং স্কিল ট্রেনিং দিয়ে রেখে দেন, দে উইল বি...এ জন্য এটার ধীরগতি হলো। আর এখন তো মিয়ানমারে কিছুটা অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে। সুতরাং আমরা জানি না।' গত পাঁচ বছরের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে একটা অস্বস্তির জায়গা তৈরি হয়েছে, এটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা নাকি অন্য কোনো কারণ আছে জানতে চাইলে মোমেন বলেন, 'আমাদের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর। আমি ঘানাতে ছিলাম গত সপ্তাহে। সেখানে মার্কিন অনেক প্রতিনিধি দল, একজন কেবিনেট মেম্বার, পিআর টু দ্য ইউএন, অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট, ডেপুটি অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট; সবাই আমার সঙ্গে সাক্ষাত করেন এবং তারা আমাদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। আমরা একটা প্রোগ্রাম যৌথভাবে আয়োজন করি।' গণমাধ্যমকর্মীর উদ্দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'যেগুলো নিয়ে আপনি অস্বস্তির কথা বললেন, তারা সেগুলোর কোনোটাই তোলেন নাই। আমি মনে করি, আমরা আগামীতে আমাদের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।' মোমেন আরও বলেন, 'তারা যেটা চায়, আমরাও সেটা চাই। আমরা চাই, দেশে একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করব। তারাও চায় দেশে একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। তার সঙ্গে তারা যোগ করেছে অহিংস। আমরা বলেছি, আমরা নিশ্চয়তা দিতে পারব না। কারণ এটা আমাদের সংস্কৃতির ওপর নির্ভর করবে। এটা নির্ভর করবে সব দল ও মতের নেতৃত্বের আন্তরিকতা ও ঐকান্তিক ইচ্ছার ওপর। তারা সেটা বোঝে। সুতরাং তাদের সঙ্গে আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক। 'তারা বন্ধু বলেই আমাদের উপদেশ দেয় এবং উপদেশ যেটা ভালো হয়, আমরা গ্রহণ করি। যেটা বাস্তববাদী না সেটা আমরা গ্রহণ করি না। তারা সেটার জন্য রাগও করে না। অমুক স্যাংশন হচ্ছে, অমুক স্যাংশন হচ্ছে—এগুলো আপনারা বলেন। ওরা আমাদের এসব বলে-টলে না।' কেনা-বেচার ব্যাপারে আপনি বলেছিলেন, ওরা বিক্রি করতে চায়, আমরা নিতে চাই না—এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'সব রাষ্ট্র, আমাদের রাষ্ট্রদূতরাও বিভিন্ন দেশে যে আমার এই জিনিসটা নাও। আমরা কম বলি কিন্তু বড় বড় বড়লোকের দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতরা সব সময় তার দেশে অধিক চুক্তি দেওয়ার জন্য, তার দেশের জিনিস কেনার জন্য পীড়াপীড়ি করে। রীতিমত পীড়াপীড়ি করে। এটা তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের অংশ। আমরা কিছু মনে করি না।' পশ্চিমারা যাদের বিরোধী দল বলছে, আপনি তাদের বলছেন সন্ত্রাসী—গণমাধ্যমকর্মীর এমন বক্তব্যের জবাবে মোমেন বলেন, 'না, যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে তাদের আমি সন্ত্রাসী বলছি।' তিনি আরও বলেন, 'যাদের আমরা ধরেছি, আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, যাদের ধরা হয়েছে তাদের ভিডিও ফুটেজ থেকে সন্ত্রাসের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পেয়েছে বলেই ধরেছে। আমাদের কোনো রাজনৈতিক নেতাকে ধরার কোনো ইচ্ছা নেই।' সংসদে যারা বিরোধী দল, তাদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তাহলে নির্বাচনটা কোথায় হচ্ছে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীর উদ্দেশে মোমেন বলেন, 'আমি এটা বলতে পারব না; আসন ভাগাভাগি...আমি শুনছি তারা কনটেস্ট, আমরাও কনটেস্ট। এখন আপনি হয়তো বেশি জানেন। তার জন্য এসব বলাবলি করছেন। 'আমি আজকেও দেখলাম টিভি স্ক্রলে তারা (জাতীয় পার্টি) বলছে সর্ব আসনে কনটেস্ট করবে। আপনি যদি আরও কিছু বেশি বোঝেন, সে জন্য বলছেন। আমি এগুলো জানি না। আমি মানুষের হৃদয় পড়তে পারি না,' যোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আমরা দেখতে পাচ্ছি, মার্কিন রাষ্ট্রদূত নির্বাচনের আগে বোয়িং কেনার ব্যাপারে বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছেন—এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'নির্বাচনের আগে না, অনেক আগে থেকে মার্কিন সরকার বিক্রি করতে...আমরা কিছু কিনতে চাচ্ছি কারণ আমাদের তো যাত্রী অনেক বেশি। আমাদের টাকারও সমস্যা, তারা প্রস্তাব দিয়েছে।' 'টাকা-পয়সা হলে আরও উড়োজাহাজ কেনা হবে,' বলে জানান মোমেন। কেনা-বেচার সঙ্গে আমেরিকার চাপ; ভিসা নিষেধাজ্ঞার কোনো সম্পর্ক আছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'কেনা-বেচাটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সব সময়ই আমাদের দেয়। নির্বাচনের সময় মনে করে আপনি একটু দুর্বল। দেখেন না, দেশের বিভিন্ন সংস্থা; বেতন বাড়াও, অমুক করো—নির্বাচনের সময় বেশি বেশি বলে কিন্তু ওদেরটা নির্বাচনের সময় করলে লাভ নাই। কারণ নির্বাচনের সময় তাদের ভোট আমার দরকার নাই। যাদের ভোট, ওদের আমরা কিছু পাত্তা দেই। 'চাপ না, অনুরোধ করে। অনুরোধকে আমরা চাপ মনে করব কেন! আমরাও তো তাদের বলি এই করো, সেই করো, এটা কি চাপ? না। তারা এখন বলছে, আমরা (বোয়িং কেনার) পয়সা কমিয়ে দেবো। এটা ভালো,' বলেন মোমেন। সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে যে, আমেরিকা চায় না এই সরকার ক্ষমতায় থাকুক; সেন্টমার্টিন দ্বীপ চায়—এ ব্যাপারে মোমেন বলেন, 'ওগুলো আমি জানি না।'
কোনো বিরোধী দলকে হয়রানি করা হচ্ছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, যারা সন্ত্রাসী তাদের শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে।
নৌকাকে জেতাতে যুবলীগের কমিটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী নিক্সন
আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের তাদের নিজ জেলায় কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের নির্দেশে গঠন করা নির্বাচন পরিচালনা কমিটি এই নির্দেশ দিয়েছে। এর মধ্যে যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সনকে ফরিদপুর জেলার আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের বিজয়ী করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অথচ তিনি নিজেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। শেখ ফজলে শামস পরশ যুবলীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন। কো-চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান। সদস্যসচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মতিউর রহমান। কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন সংগঠনটির ১৮ জন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। সাত নম্বর সদস্য হিসেবে আছেন নিক্সন। আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করতে গত ৮ ডিসেম্বর কমিটির সদস্যদের একটি চিঠি দেওয়া হয়। এই চিঠির কথা এতদিন জানা না গেলেও আজ মঙ্গলবার সেটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর, চরভদ্রাসন) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহ। এ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ফরিদপুর-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য নিক্সন। তাকে নৌকার পক্ষে ফরিদপুর জেলায় কাজ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় স্বতন্ত্র প্রার্থী নিক্সনের ভূমিকা কী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। জানতে চাইলে নিক্সনের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ ও ফরিদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহদাৎ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, নিক্সন চৌধুরী যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হলেও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের 'দলীয় ব্যক্তিরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে পারবেন' এ সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তিনি পর পর দুবার ফরিদপুর-৪ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। নিক্সন চৌধুরী এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এলাকাবাসীর দাবির মুখে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। এ অবস্থায় আমাদের পিছিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।
আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের তাদের নিজ জেলায় কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের নির্দেশে গঠন করা নির্বাচন পরিচালনা কমিটি এই নির্দেশ দিয়েছে।
মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রদল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রেপ্তার
মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবদুল খালেক শুভ ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সজিবকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার ঘোস্তা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। র‌্যাব-৪ এর মানিকগঞ্জ ক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. আরিফ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। র‌্যাব জানায়, গত ৩০ অক্টোবর গাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে জেলা ছাত্রদল সভাপতি আবদুল খালেক শুভ ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সজিবের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা হয়েছে। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে সদর থানায় নাশকতার অভিযোগে আরেকটি মামলা আছে। র‌্যাব কর্মকর্তা আরিফ হোসেন বলেন, 'নাশকতার মামলায় ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের সদর থানায় হস্তান্তর করা হবে।' দুই ছাত্রদল নেতার গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির সভাপতি, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আফরোজা খান রিতা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরকার পতন আন্দোলন বেগবান করতে জেলা ছাত্রদল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিলেন। আজ সকালেও তাদের নেতৃত্বে মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল হয়। বিএনপির আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতেই তাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।'
মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবদুল খালেক শুভ ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সজিবকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।
‘বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি কমলেও দেশের জনগণের সঙ্গে তো কমেনি’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় লক্ষ্য করছে এই সরকারের বৈশিষ্ট্য। একজনের ক্ষমতা ধরে রাখতে এই সরকার দেশকে নরকে পরিণত করেছে। আজ মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, 'একজন মন্ত্রী বলেছেন যে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে সেগুলো কমে আসছে। কিন্তু জনগণের সঙ্গে যে ভুল বোঝাবুঝি, সেটা তো কমেনি।' সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'জনগণ তো আপনাদের বিশ্বাস করে না, জনগণ যে আপনাদের অত্যাচারী সরকার হিসেবে গণ্য করে, এই জনগণের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি কমানোর কোনো উদ্যোগ তো আপনারা নেননি।' 'চেষ্টা করছেন যে, অমুক দেশ যদি আমাদের সঙ্গে না আসে, তাহলে তার পাল্টা কে আছে। সেই দেশের সঙ্গে সখ্যতা বজায় রাখার চেষ্টা করছেন। যখন দেখছেন পারছেন না, তখন তাদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করছেন,' যোগ করেন তিনি। বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, 'দুয়েকদিন আগে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে দেখলাম বলছেন দূরত্ব অনেক কমে আসছে। কয়েকদিন আগেই না আপনারা বললেন যে বিদেশিরা অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে, জাতিসংঘে চিঠি দিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আবার দূরত্ব কমানোর কথা বলছেন। একটা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড সরকার বাংলাদেশে আসন গেঁড়ে বসে আছে।' তিনি বলেন, 'সরকারের পতন না হলে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে আমরা সবাই বন্দীই থেকে যাব। যারা তাদের খবরদারির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবেন তারা নিরুদ্দেশ হয়ে যাবেন, তাদের অদৃশ্য করে ফেলা হবে।' 'সরকার দেশকে নরকে পরিণত করেছে' উল্লেখ করে রিজভী বলেন, 'কিছুদিন আগে এক বিচারপতিও একই কথা বলেছেন। গত দেড় দশক ধরে তা সুস্পষ্ট। কারও কোনো নিরাপত্তা নেই। সবাই ভয়-আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এদের অধীনে কোনোভাবেই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে পারে না।' 'আমরা একটা ঔপনিবেশিক শাসনে আছি' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের সরকার কিছু দেশের স্বার্থ রক্ষা করছে। দুয়েকটি দেশ আছে যারা বাংলাদেশের কৃষ্টি-কালচারের ধার ধারে না। অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র থাকল, কী থাকল না, সেটাকে তারা তোয়াক্কা করে না।' 'এখনো গ্রেপ্তার অভিযান চলছে, আমাদের নেতাকর্মীদের বিনিদ্র রজনী কাটাতে হচ্ছে। খেতে-খামারে, নদীর মধ্যে নেতাকর্মীরা রাত কাটাচ্ছেন। আপনারা উন্নয়নের কথা বলেন। উন্নয়ন করেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংখ্যা বাড়িয়েছেন বিরোধীদের দমন করার জন্য,' যোগ করেন তিনি। রিজভী বলেন, 'কেউ কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচির কথা চিন্তা করলেই, থট পুলিশ চলে আসছে। এসে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি এরকমই। শেখ হাসিনার রাজত্বের এসব ঘটনার কথা আগেই চিন্তা করে প্রতিভাবান লেখকরা এসব বিষয় নিয়ে উপন্যাস লিখেছেন। বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন জর্জ অরওয়েলের "নাইনটিন এইটি ফোর" উপন্যাসের অবস্থার মতো। আমরা এখন তার অ্যানিমেল ফার্মের মধ্যে বসবাস করছি। শেখ হাসিনা দেশের জনগণকে পশুর খোয়ারে আটকে রেখেছেন।' তিনি বলেন, 'চারিদিকে এখন শুধু নৈরাজ্য। সরকারের লুটপাটের কারণে বিদেশে আমাদের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে না। পোশাক খাত এখন বড় ধরনের বিপর্যয়ের মধ্যে। এই অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। গণতান্ত্রিক সংগ্রামকে আরও জরদার করতে হবে। আমাদের গণতন্ত্রকামী নেতাকর্মীরা শত বাধার মধ্যে রাজপথে নেমে আসছে।' বিএনপির ডাকা ৩৬ ঘণ্টার চলমান অবরোধ সফল করার জন্য রিজভী সবার প্রতি আহ্বান জানান।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় লক্ষ্য করছে এই সরকারের বৈশিষ্ট্য। একজনের ক্ষমতা ধরে রাখতে এই সরকার দেশকে নরকে পরিণত করেছে।
‘দু-একজন পীর ঘুষির প্রতিবাদে মিছিল করেন, কিন্তু ফিলিস্তিনে মানুষ হত্যার প্রতিবাদ করতে পারেন না’
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'বিএনপিকে অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্যের নেতৃত্ব দিয়ে আজকে তারেক রহমান একটি আন্ডারগ্রাউন্ড দলে, সন্ত্রাসী সংগঠনে রূপান্তরিত করেছেন। আর সেটার সামাজিক ও রাজনৈতিক যন্ত্রণা ভোগ করছে বিএনপির নেতাকর্মীরা।' আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত 'বিএনপি-জামায়াতের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অগ্নিসন্ত্রাসের প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন' শীর্ষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'বিএনপি-জামাত তাদের জনসমর্থন হারিয়ে এখন পলাতক দল। তারা গুপ্ত স্থান থেকে আন্দোলনের ডাক দেয় আর গাড়ি-ঘোড়ায় পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে। প্রকৃত অর্থেই বিএনপি-জামাত এখন আন্ডারগ্রাউন্ড সংগঠনে রূপান্তরিত হয়েছে। পুলিশ কিংবা আওয়ামী লীগ বিএনপির কার্যালয়ে তালা লাগায়নি, সরকার তালা লাগায়নি, তারা নিজেরাই তালা লাগিয়েছে। তাদের অফিসে তালা খোলার জন্য যারা একটা মানুষ খুঁজে পায় না, তারা আবার সরকার পতন ঘটাবে।' হাছান মাহমুদ বলেন, 'আমাদের অনেক বিএনপি নেতার সঙ্গে বিমানবন্দরে, ট্রেন স্টেশনে, বিয়ে-শাদীতে দেখা হয়। তখন তাদেরকে জিজ্ঞাস করি, ভাই আপনারা কি করছেন? তারা বলে—সব উনার ইচ্ছা, লন্ডনে যে আছেন উনার ইচ্ছা। অর্থাৎ বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য এক তারেক রহমানই যথেষ্ট, আর কাউকে দরকার নেই। পৃথিবীর কোথাও গত দুই-তিন দশকে রাজনীতির দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য গুপ্ত স্থান থেকে চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়নি, যেটি বিএনপি আজকে করছে। এই বিএনপির জন্য আবার কেউ কেউ মায়াকান্না করে।' সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, 'জামায়াতে ইসলামী শ্লোগান দেয় "আল্লাহর আইন চাই, সৎ লোকের শাসন চাই"। আর আজকে ফিলিস্তিনে হাজার হাজার নারী-শিশুসহ মুসলমানদের যে হত্যা করা হচ্ছে, তার কোনো প্রতিবাদ তারা করেনি। বিএনপিও করেনি। বিএনপি-জামায়াত আজ শুধু ইসলামের শত্রু নয়, মানবতার শত্রুতে রূপান্তরিত হয়েছে। কারণ ফিলিস্তিনে শুধু মুসলমানরাই নয়, বহু খ্রিস্টানও ইসরাইলি বাহিনীর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, সাতটি গির্জা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আর এর বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি কোনো কথা বলে না।' তিনি বলেন, 'যারা নির্যাতন-হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করছে, বিএনপি-জামায়াত তাদের পক্ষ নিয়েছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রও নরম সুরে বলেছে, এভাবে সাধারণ মানুষকে হত্যা করা ঠিক হচ্ছে না। কিন্তু বিএনপি এই কথা বলতেও ব্যর্থ হয়েছে। এরা আবার রাজনীতি করে।' তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি পীর সাহেবদের সম্মান করি। আমার বাপ-দাদাও সম্মান করতেন, আমিও করি। কারণ এ দেশে ইসলাম কায়েম হয়েছে পীর-আউলিয়াদের মাধ্যমে। দু-একজন পীর সাহেব সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেন, কিন্তু ফিলিস্তিনে যে আজকে মানুষ হত্যা হচ্ছে সেটির বিরুদ্ধে মিছিল পর্যন্ত করতে পারেননি। তারা একটি ঘুষির প্রতিবাদে সারাদেশে মিছিল করেন, আর ওদিকে যে হাজার হাজার মানুষকে, নারী ও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে, সেটির জন্য একটা মিছিলও বের করতে পারেন না। আমি প্রার্থনা করি এই পীর সাহেবদের যেন আল্লাহ হেদায়েত করেন।' হাছান মাহমুদ বলেন, 'বিএনপি-জামায়াত ভেবেছিল নির্বাচন আমরা করতে পারবো কি পারবো না। এখন বুঝতে পেরেছে যে উৎসবমুখর পরিবেশে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে নির্বাচন হয়ে যাচ্ছে। যারা বাতাস দিচ্ছিল, তারা বাতাসটা সরিয়ে নিচ্ছে। যারা তলে তলে তাল দিচ্ছিল, তারাও বুঝতে পেরেছে এই অপদার্থ বিএনপিকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। আমরা যদি আবার সরকার গঠন করতে পারি, এই আগুনসন্ত্রাসীদের সমূলে উৎপাটন করা হবে। সন্ত্রাসীদের সঙ্গে, আন্ডারগ্রাউন্ড দলের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে না। আলোচনা হয় যারা নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করে তাদের সঙ্গে। আমি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের রাজপথে থাকতে এবং কোনো আগুনসন্ত্রাসীকে বা সন্ত্রাসের পরিকল্পনাকারীকে দেখলে পুলিশে সোপর্দ করতে আহ্বান জানাবো।'
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'বিএনপিকে অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্যের নেতৃত্ব দিয়ে আজকে তারেক রহমান একটি আন্ডারগ্রাউন্ড দলে, সন্ত্রাসী সংগঠনে রূপান্তরিত করেছেন। আর সেটার সামাজিক ও রাজনৈতিক যন্ত্রণা ভোগ করছে বিএনপির নেতাকর্মীরা।'
বলপ্রয়োগ বা ফ্রি স্টাইলে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার সুযোগ নেই: ওবায়দুল কাদের
জোটের শরীকদের আপত্তি ও দলীয় প্রার্থীদের অস্বস্তি থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, 'শরিকদের আপত্তি থাকলেও নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকবে। স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে দলীয় প্রার্থীদের অস্বস্তি অমূলক। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কোনো বিকল্প নেই। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার কারো সুযোগ নেই।' সেতুমন্ত্রী আজ মঙ্গলবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ বলেন, এখানে স্বস্তি-অস্বস্তির বিষয় নয়, শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন, স্বতন্ত্র থাকবে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে আওয়ামী লীগের অবস্থান স্পষ্ট। তবে কাউকে সহিংসতা করতে দেওয়া হবে না। সে যে দলের প্রার্থীই হোক। তিনি বলেন, নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ার কারও সুযোগ নেই। বল প্রয়োগ বা ফ্রি স্টাইলে যাওয়া যাবে না। ওবায়দুল কাদের বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনীর দায়িত্ব পালন নিয়ে আপত্তি নেই আওয়ামী লীগের। তবে সেনাবাহিনীকে সব বিষয়ে বিতর্কিত করার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ। সহিংসতা করে, ষড়যন্ত্র করে ও সন্ত্রাস করে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে বানচাল করা যাবে না জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বলতে চাই সহিংসতা করে, ষড়যন্ত্র করে, সন্ত্রাস করে আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে বানচাল করা যাবে না। বিএনপি যদি মনে করে তারা সন্ত্রাস করবে আর সরকার বসে থাকবে, সেটা তাদের ভুল ধারণা। নির্বাচন কমিশন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সন্ত্রাস-সহিংসতার বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে উন্নয়ন সমৃদ্ধির পথে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশের অর্জন আজ আমাদের অহংকার। এই ঈর্ষণীয় অর্জন সারা দুনিয়ার প্রশংসিত হয়েছে। আমাদের দেশে কিছু লোক, কিছু দল আছে যারা দেশের অর্জন-উন্নয়ন প্রশংসা করে না। তারা দেশকে ছোট করার জন্য, খাটো করার জন্য বিদেশিদের কাছে দেশের বদনাম করে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ জাতির নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হলো বিএনপি-জামায়াত। মানুষকে জিম্মি করে তারা রাজনীতি করে। বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ মানেই বাসে আগুন, গুপ্ত হামলা। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন ও সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জোটের শরীকদের আপত্তি ও দলীয় প্রার্থীদের অস্বস্তি থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শেরীফা কাদের জাপার নতুন প্রেসিডিয়াম সদস্য
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সভাপতি শেরীফা কাদেরকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার জাপার যুগ্ম-দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী শেরীফা কাদেরকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে এ আদেশ কার্যকর হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সভাপতি শেরীফা কাদেরকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ও সমর্থকদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে: তৈমুর
তৃণমূল বিএনপির অভিযোগ, নির্বাচনের আগে সারাদেশে দলটির প্রার্থী ও সমর্থকদের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকায় দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তৃণমূল বিএনপির সদস্য সচিব তৈমুর আলম খন্দকার এ দাবি করেন। তিনি বলেন, 'আমাদের সমর্থকরা বিভিন্নভাবে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে, প্রতিকূল পরিস্থিতির স্বীকার হচ্ছে। কিছু কিছু ঘটনা যদি এখনি নিয়ন্ত্রণে আনা না যায় তাহলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে যাবে।' 'শেখ হাসিনা আপনি সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আপনার নিয়ন্ত্রণেই আছে। এসব ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করেন,' বলেন তৈমুর। তিনি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও যারা গত নির্বাচনকে বিতর্কিত করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, এসব দাবি পূরণ না হলে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার সম্ভাবনা নাই। তৈমুর বলেন, 'শেখ হাসিনা যদি এসব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।' তৃণমূল বিএনপির প্রার্থীরা দেশের বিভিন্ন আসন থেকে ১৫১টি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। যার মধ্যে ১৩৯টি নির্বাচন কমিশন বৈধ ঘোষণা করেছে।
তৃণমূল বিএনপির অভিযোগ, নির্বাচনের আগে সারাদেশে দলটির প্রার্থী ও সমর্থকদের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।
‘এরশাদের স্ত্রী-সন্তানকেও মনোনয়ন দেয়নি, তাদের সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দেখব’
জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, ছেলে সাদসহ আরও নেতাদের নির্বাচনে মনোনয়ন না দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখবেন বলে জানিয়েছেন দলটির সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক শেষে টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি এ কথা জানান। বৈঠক বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান বলেন, বৈঠকে রওশন এরশাদ বলেছেন, আমি দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পত্নী, বিরোধী দলীয় নেতা, আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। আমার ও এরশাদের ছেলেকে (সাদ) তারা মনোনয়ন দেয়নি। ওই জায়গায় তিনি (জিএম কাদের) নিজে দাঁড়িয়েছেন। চেয়ারম্যান যদি বৈষম্য করেন, সাদ কী দোষ করেছে যে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। এরকম আরও অন্তত দেড়শ কর্মীকে মনোনয়ন দেওয়া হয় নাই। সুতরাং আপনি কার সঙ্গে অ্যালায়েন্স করবেন, আমার সঙ্গে করবেন না ওদের সঙ্গে। 'প্রধানমন্ত্রী তখন বলেছেন, ঠিক আছে, ব্যাপারটি নিয়ে আমরা ভাবব, আমরা দেখব। যেহেতু আপনি বলছেন দল ভেঙে গেছে, দল যদি ভেঙে থাকে, তাহলে তো ভেঙে গেছে', বলেন মসিউর রহমান রাঙ্গা। গণভবনের বৈঠক শেষে রাঙ্গা সাংবাদিকদের বলেন, তিনি (রওশন) হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পত্নী, তিনি দল পরিচালনা করেছেন, তিনি জেল খেটেছেন আড়াই বছর। সাদ আমার পাশে দাঁড়িয়ে আছে, সেও আড়াই বছর জেলে ছিল। ছোটবেলা থেকে জেলে ছিল। এমপি হওয়ার অধিকার তো এরশাদ সাহেবের সন্তানের রয়েছে। সে (জিএম কাদের) তো চাচা হিসেবে তাকে (সাদ) ভাতিজাই মনে করে। সুতরাং সেই আসনে তিনি নিজে দাঁড়িয়েছেন। এটা তো একটা নেতৃত্বসুলভ আচরণ হলো না। তিনি আত্মীয়র সঙ্গে সমস্যা করলেন। তার ভাবির সম্পর্কেও তিনি কুমন্তব্য করেন। তার মহাসচিব (মুজিবুল হক চুন্নু) তিনিও করেন। আমার সম্পর্কেও অনেক গিবত তারা করেন। করুক, রাজনীতি করতে গেলে আমাদের শুনতে হয় এগুলো। 'আমি মনে করি, তিনি (রওশন) আসছিলেন যে, আমাকে যখন মনোনয়ন দেওয়া হয়নি এবং দলের আরও এরকম নেতাকর্মী, অন্তত আড়াই থেকে ৩০০ নেতাকর্মীকে তারা (জিএম কাদের) বহিষ্কার করেছে এবং তাদের কাউকেই তারা মনোনয়ন দেয়নি। আমি সত্যি করে বলছি যে, আমার একমাত্র মেয়ে সেখানে গিয়েছিল, আমার ভাতিজি সেখানে গিয়েছিল, তাদেরকে অপমান করেছে। মনোনয়ন তো দেয়নি, বরং তাদেরকে অপমান করেছেন। সেখানে কো-চেয়ারম্যানরা সবাই বসা ছিল। তাদের সামনেই করেছে। তারা সাক্ষী আছে। আপনারা তাদের জিজ্ঞাসা করলে বলতে পারবে।' মসিউর রহমান রাঙ্গা আরও বলেন, এখন কথা হলো হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সন্তান সাদ যদি মনোনয়ন না পায়, বেগম রওশন এরশাদ হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের স্ত্রী, তিনি যদি মনোনয়ন না পান, আমি দুই দুইবার দলের মহাসচিব, আমি যদি মনোনয়ন না পাই, তাহলে কাদেরকে নিয়ে তারা নির্বাচন করছেন, আমরা এ ব্যাপারে সংকীর্ণ। সেই কারণে আমরা চাই ওই জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমরা, আমাকে তো তারা সাসপেন্ড করেছে, আমি সাসপেন্ড আছি, আমরা চাই ওদের সঙ্গে আমরা থাকব না। আমাদের বিরোধী দলীয় নেতা বলেছেন, যেহেতু জাতীয় পার্টির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক আমাদের রাখেনি তারা, সুতরাং তারা তাদের মতো নির্বাচন করবে। দেশব্যাপী তারা নির্বাচন করুক, উৎসবমুখর নির্বাচন হোক। কিন্তু যদি অ্যালায়েন্স করতে হয়, তাহলে আমাদের সঙ্গে আলাপ করতে হবে। আমরাও অ্যালায়েন্সের ভাগীদার হতে পারি। সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী কী বলেছেন, গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি তার পরিষদ নিয়ে বসবেন। পরিষদ নিয়ে বসে আলোচনা করে তিনি সিদ্ধান্ত দেবেন। আরওগণভবনে রওশন এরশাদ
জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, ছেলে সাদসহ আরও নেতাদের নির্বাচনে মনোনয়ন না দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখবেন বলে জানিয়েছেন দলটির সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা।
২৪ ঘণ্টায় ৭ যানবাহনে আগুন: ফায়ার সার্ভিস
গতকাল সোমবার সকাল ৬টা থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায়০ সারাদেশে ৭টি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে ৫টি, আশুলিয়ায় ১টি ও ফেনীতে ১টি গাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুন দেওয়া যানবাহনের মধ্যে ৬টি বাস ও ১টি পরিত্যক্ত প্রাইভেট কার রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস জানায়, গত ২৮ অক্টোবর থেকে ১২ ডিসেম্বর সকাল ৬টা পর্যন্ত মোট ২৭৪টি আগুনের খবর পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এতে ২৭০টি যানবাহন ও ১৫টি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব যানবাহনের মধ্যে রয়েছে—বাস ১৬৮টি, ট্রাক ৪৪টি, কাভার্ড ভ্যান ২৩টি, মোটরসাইকেল ৮টি ও অন্যান্য গাড়ি ২৭টি।
গতকাল সোমবার সকাল ৬টা থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায়০ সারাদেশে ৭টি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।
গুলিস্তানে সকাল থেকে ২ বাসে আগুন
রাজধানীর গুলিস্তানে আরও একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ মঙ্গলবার সকাল আনুমানিক সোয়া ১২টার দিকে হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে পুলিশ বক্সের সামনে এই ঘটনা ঘটে। এর আগে, সকাল ১০টার দিকে পাতাল মার্কেটের পাশে বাহন পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেলের ওয়্যার হাউস ইন্সপেক্টর আনোয়ারুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে ১২টা ২৫ মিনিটে সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশনের ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভায়। এ ঘটনায় কেউ আহত হয়নি বলে জানান তিনি। বিএনপির ডাকে দেশজুড়ে ৩৬ ঘণ্টার অবরোধ শুরু হয়েছে আজ। ১১তম দফার এই অবরোধ কাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হবে।
রাজধানীর গুলিস্তানে আরও একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
গণভবনে রওশন এরশাদ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গণভবনে গিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে তিনি গণভবনে যান বলে জাপা সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানিয়েছে, রওশন এরশাদের সঙ্গে রয়েছেন তার ছেলে সাদ এরশাদ ও মুখপাত্র কাজী মামুনুর রশীদ। দুপুর ১টায় তাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রওশন এরশাদ ও তার অনুসারী নেতারা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। আরও'অবমূল্যায়ন' করায় নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা রওশন এরশাদের
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গণভবনে গিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ।
গুলিস্তানে বাসে আগুন
রাজধানীর গুলিস্তানে পাতাল মার্কেটের পাশে বাহন পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেলের ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর আনোয়ারুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানান। তিনি আরও জানান, সংবাদ পাওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে। আজ বিএনপির ৩৬ ঘণ্টা অবরোধের প্রথম দিনে রাজধানীতে বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটল।
রাজধানীর গুলিস্তানে পাতাল মার্কেটের পাশে বাহন পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে।
ভোটের প্রয়োজন হলে সরকার বাজারের নিয়ন্ত্রণ ব্যবসায়ীদের হাতে ছেড়ে দিত না: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিরোধী দলের সক্রিয় নেতাকর্মীদের দমন করতে কারাগারের ভেতরে ও বাইরে নানাভাবে অমানবিক নির্যাতন করা হচ্ছে। কারাবন্দিদের ওপর অবর্ণনীয় ও নৃশংস নির্যাতন করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি আরও বলেন, কারাবন্দি বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে হত্যা করা হচ্ছে। অসুস্থ বন্দিদের হাসপাতালে না পাঠিয়ে হাত-পায়ে শিকল দিয়ে কারাগারে রেখে দেওয়া হচ্ছে। বিএনপির এ নেতা বলেন, বিএনপির কারাবন্দি নেতাকর্মীদের দিন-রাত কারাগারে দমবন্ধ কক্ষে আটকে রাখা হচ্ছে। তিনি বলেন, 'তাদের অসুস্থতার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। অত্যন্ত নিম্নমানের খাবার দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে... বন্দিদের মৃত্যুর পর সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায় এড়াতে গল্প তৈরি করছে।' রিজভী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, কারা হেফাজতে মৃত্যুর দায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কারা কর্মকর্তারা এড়াতে পারবেন না। প্রতিটি মৃত্যু ও হত্যার জন্য তাদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। ব্রিটিশ সংবাদপত্র গার্ডিয়ানের সাম্প্রতিক 'ফুল প্রিজন অ্যান্ড ফলস চার্জেস: বাংলাদেশ অপজিশন ফেসেস প্রি-ইলেকশন ক্র্যাকডাউন' শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, সরকার কীভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম ও কারারুদ্ধ করছে। বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশের ৬৮টি কারাগারে ৪৩ হাজারেরও কম বন্দি রাখার সক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে এসব কারাগারে প্রায় ৮৮ হাজার বন্দি রয়েছে। তিনি বলেন, 'অবৈধ দখলদার সরকার পুরো দেশকে নরকে পরিণত করেছে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য। বাড়ির বাইরে কোথাও মানুষের নিরাপত্তা নেই। দেশের মানুষ অজানা ভয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।' রিজভী বলেন, কারাগারগুলো মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে এবং কারাগারগুলো হিটলারের গ্যাস চেম্বারের মতো শেখ হাসিনার গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, 'দেশের ৬৮টি কারাগারের প্রতিটিই টর্চার সেলের মতো, যেখানে রাজনৈতিক বন্দিরা প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর ভয় পায়। সুস্থ নেতাকর্মীদের মিথ্যা ও কাল্পনিক মামলায় নির্যাতন করে কারাগারে নিক্ষেপ করা হচ্ছে এবং লাশের মতো বের করে আনা হচ্ছে।' গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, এ বছর বিএনপি নেতাকর্মীসহ প্রায় ১০০ জন কারাগারে মারা গেছেন। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, পেঁয়াজ, রসুন, মসুর ডাল ও চালের দাম নিয়ে দেশে নৈরাজ্য চলছে। তিনি বলেন, সরকারি কর্তৃপক্ষের কোনো তদারকি না থাকায় ব্যবসায়ীরা সব নিয়ম-কানুন উপেক্ষা করে তাদের ইচ্ছানুযায়ী পণ্যের দাম নির্ধারণ করছেন। সরকারের যদি জনগণের ভোটের প্রয়োজন হতো, তাহলে তারা বাজারের নিয়ন্ত্রণ তার দলের ব্যবসায়ীদের হাতে ছেড়ে দিত না।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিরোধী দলের সক্রিয় নেতাকর্মীদের দমন করতে কারাগারের ভেতরে ও বাইরে নানাভাবে অমানবিক নির্যাতন করা হচ্ছে।
১৮ ডিসেম্বর ঢাকায় বিজয় দিবসের মিছিল করবে আওয়ামী লীগ
বিজয় দিবস উপলক্ষে আগামী ১৮ ডিসেম্বর ঢাকায় মিছিল করার ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আজ সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আমরা ১৬ ডিসেম্বর মিছিল করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু নির্বাচনী আচরণবিধি নিয়ে সমস্যা থাকায় আমরা ১৮ ডিসেম্বর মিছিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।' আগামী ১৮ ডিসেম্বর আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। এর আগ পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিজয় মিছিল ইন্সটিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্সে শুরু হয়ে ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে গিয়ে শেষ হবে।' শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিও ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আগামী ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। আগামী ১৭ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এই সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিজয় দিবস উপলক্ষে আগামী ১৮ ডিসেম্বর ঢাকায় মিছিল করার ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
২ সপ্তাহে বেশির ভাগ পণ্যের দাম কমেছে: তথ্যমন্ত্রী
গত দুই সপ্তাহে বেশির ভাগ পণ্যের দাম কমেছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পেঁয়াজের দাম হঠাৎ প্রতি কেজিতে ৫০-১০০ টাকা বেড়ে যাওয়া কোনোভাবেই সমীচীন নয়। আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। সিন্ডিকেট রুখে দিতে সরকার বারবারই ব্যর্থ হচ্ছে বলা যায়। প্রতিটি পণ্যের ক্ষেত্রে বাজারে সিন্ডিকেট তৈরি হচ্ছে। সিন্ডিকেট রুখে দিতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল—ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সরাসরি পণ্য কিনে বিক্রি করবে। সেই উদ্যোগ চলমান নেই। এ ক্ষেত্রে ব্যর্থতাটা কোথায় জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'গত দুই সপ্তাহে বেশির ভাগ দ্রব্যের মূল্য কমেছে। গরুর মাংস আমার এলাকায় ৫৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে, মাইকিং করে। যেটি কয়দিন আগেও ৭৫০-৮০০ টাকা ছিল। শাক-সবজির দাম কমেছে এবং অন্যান্য পণ্যের দামও কমেছে। 'হ্যাঁ, পেঁয়াজের দামটা হঠাৎ করে বেড়েছে। পেঁয়াজের দাম যেভাবে লাফিয়ে বেড়েছে, আমি আপনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত; সেটি হওয়ার কোনো কারণ ছিল না। ভারত মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে বেড়ে যাওয়া, এটা হচ্ছে আমাদের যারা ব্যবসায়ী; পাইকারি ব্যবসায়ী বা খুচরা ব্যবসায়ী—সব পর্যায়ের ব্যবসায়ীর অসৎ মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ ছাড়া অন্য কোনো কিছু নয়,' বলেন তিনি। তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'হঠাৎ প্রতি কেজিতে ৫০-১০০ টাকা বেড়ে যাওয়া, এটি কোনোভাবেই সমীচীন নয়। ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর এ নিয়ে অভিযান শুরু করেছে। ১৩৩ জন ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছে। এতে করে বাজারে কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে কিন্তু পুরোপুরি আসেনি।' পেঁয়াজের দাম শিগগির কমে যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, 'কারণ এক সপ্তাহের মধ্যে দেশি পেঁয়াজ বাজারে আসা শুরু করবে।' হাছান মাহমুদ বলেন, 'আমরা যারা ভোক্তা, আমাদের একটি ট্রেন্ড আছে, কোনো একটি পণ্যের সংকট হচ্ছে গুজব রটালেও আমরা গিয়ে ওইটা এক কেজি কেনার জায়গায় পাঁচ কেজি কেনা শুরু করি। এতে করে ব্যবসায়ীরা আরও সুযোগ পায়। এ ক্ষেত্রেও আমাদের একটু সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি। 'পেঁয়াজের দাম সহসা কমে যাবে। ভারত থেকেও পেঁয়াজ আসবে। তবে বেশির ভাগ পণ্যের দাম গত দুই সপ্তাহে কমেছে,' বলেন তিনি। নির্বাচন প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'এখনো যারা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে ক্রমাগতভাবে অবরোধ ডাকছে, তারাও বুঝতে পেরেছে যে, নির্বাচন একটি সুন্দর-স্বচ্ছ এবং জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটি ভালো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেই কারণেই বিদেশি পর্যবেক্ষকরা আসার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।' গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'আমি মনে করি, সাংবাদিকদের বড় ভূমিকা রয়েছে। গণমাধ্যমের বড় ভূমিকা রয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য সংবাদপত্রে, টেলিভিশনে, অনলাইনে নির্বাচনী খবরা-খবর প্রচার; নির্বাচনী উৎসব যে গ্রামে-গঞ্জে শুরু হয়ে গেছে সেটি প্রচার করলে এ উৎসবের মাত্রা আরও বাড়বে। মানুষের অংশগ্রহণও নির্বাচনে বাড়বে।' তিনি বলেন, 'আমি দেখতে পাচ্ছি যে, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রার্থীদের হলফনামা নিয়ে ব্যাপক প্রচার হচ্ছে। এটি প্রতিবারই হয় এবং মানুষও সেগুলো উৎসাহ নিয়ে পড়ছে। আমিও পড়ছি। আমিও যে পড়ছি না তা নয়—আমিও পড়ছি এবং বিভিন্ন জন সম্পর্কে জানারও সুযোগ হচ্ছে এতে করে। এগুলো আমাদের দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ারই অংশ। 'আমাদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া যে স্বচ্ছ সেটিরও বহিঃপ্রকাশ কিন্তু এটি। সব দেশে কিন্তু এভাবে প্রকাশ করা হয় না। ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পরে এবং প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেও তার ট্যাক্স ফাইল তিনি প্রকাশ্যে আনেননি। আমাদের দেশে লেটেস্ট ট্যাক্স ফাইল সাবমিট করা বাধ্যতামূলক। এ রকম অনেকগুলো বিষয় আছে, যেগুলো অনেক উন্নত দেশের চেয়ে আমাদের দেশে; নির্বাচনী আইন এবং পাশাপাশি নির্বাচনী প্রক্রিয়া অনেক বেশি স্বচ্ছ,' যোগ করেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'শরিকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আমরা আশা করছি, সহসা তাদের সঙ্গে একটি সমঝোতা হবে। ১৪ দলীয় জোটের মধ্যে সমঝোতা হবে এবং জাতীয় পার্টিসহ অন্যদের সঙ্গে যে স্ট্র্যাটেজিক্যাল অ্যালায়েন্সের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো নিয়েও আমরা একটি ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারব।' তিনি বলেন, 'স্বতন্ত্র প্রার্থী সব সময় নির্বাচনে থাকে। আমাদের দল থেকে সব সময় অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছে, দেশেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়। অনেকের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিল। আপিলের পর দেখা যাচ্ছে, প্রথম দিনে ৫০ শতাংশ প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছে। আমি মনে করি, তাদের অংশগ্রহণ নির্বাচনকে উৎসবমুখর করার ক্ষেত্রে সহায়ক হচ্ছে।'
গত দুই সপ্তাহে বেশির ভাগ পণ্যের দাম কমেছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পেঁয়াজের দাম হঠাৎ প্রতি কেজিতে ৫০-১০০ টাকা বেড়ে যাওয়া কোনোভাবেই সমীচীন নয়।
নাশকতা মামলায় বিএনপির ১৮ নেতাকর্মীর ৩০ মাসের কারাদণ্ড
রাজনৈতিক সহিংসতার মামলায় ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আনোয়ারুজ্জামান ওরফে আনোয়ারসহ ১৮ জনকে ৩০ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মামলায় দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব ও নগরীর ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি লুৎফর রহমান ওরফে এল রহমানও আছেন। ঢাকা মহানগর হাকিম মো. মেহেদী হাসান কারাগারে ধাকা মামলার একমাত্র আসামি আনোয়ারের উপস্থিতিতে আজ সোমবার এ সাজা দেন। নীরব, এল রহমানসহ ১৭ জন আদালত থেকে জামিন নিয়ে পলাতক আছেন। রায় ঘোষণার আগে ম্যাজিস্ট্রেট তাদের জামিন বাতিল করে পলাতক ঘোষণা করেন। ম্যাজিস্ট্রেট তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করেন এবং তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন। তাদের গ্রেপ্তার বা আত্মসমর্পণের দিন থেকে তাদের শাস্তি কার্যকর হবে বলে ম্যাজিস্ট্রেট তার রায়ে বলেছেন। এর আগে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষ তাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করে এবং মামলার অভিযোগকারীসহ প্রসিকিউশনের আট জন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৩ সালের ২৬ মার্চ রাত ৮টার দিকে তেজগাঁও এলাকার কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনের সামনে আনোয়ার ও নীরবের নেতৃত্বে বিএনপি ও এর ফ্রন্ট সংগঠনের একদল নেতাকর্মী জড়ো হয়ে পেট্রোল ঢেলে একটি ট্যাক্সি-ক্যাব জ্বালিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ক্যাবের চালক মো. বাবুল বাদী হয়ে আনোয়ার, নীরব, এল রহমানসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ১৫ জানুয়ারি আনোয়ার, নীরব, এল রহমানসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
রাজনৈতিক সহিংসতার মামলায় ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আনোয়ারুজ্জামান ওরফে আনোয়ারসহ ১৮ জনকে ৩০ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এক মাসে বিএনপি-জামায়াতের ৬১০ নেতাকর্মীর কারাদণ্ড
নাশকতা মামলায় রাজধানীতে কয়েক বছর আগে দায়ের করা মামলায় গত এক মাসে বিএনপি-জামায়াত ও এদের অঙ্গ সংগঠনের অন্তত ৬১০ নেতাকর্মীকে নানান মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের নভেম্বরের মধ্যে দায়ের করা ৩০টি মামলায়ও অনেককে দোষী সাব্যস্ত করেছেন আদালত। বিনা অনুমতিতে রাস্তায় জমায়েত, নাশকতা, সম্পদের ক্ষতি করা, যানবাহনে আগুন দেওয়া ও ভাঙচুর এবং পুলিশের ওপর হামলা ও পুলিশকে দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলাগুলো দায়ের করা হয়। এত কম সময়ের মধ্যে পুরোনো মামলায় বিপুল সংখ্যক লোককে সাজা দেওয়ার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মীরা। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী জেড আই খান পান্না দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এত তাড়াহুড়ো করে এতজনকে দোষী সাব্যস্ত করা ও সাজা দেওয়া আইনের শাসনের পরিপন্থি। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কি আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল? সাক্ষ্য দেওয়ার আগে সাক্ষীদের জবানবন্দিগুলো ক্রস-চেক করা হয়েছিল?' 'এমনকি মৃত ব্যক্তিদেরও মামলায় আসামি এবং দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'আমি জানি না আলাদিনের চেরাগ দিয়ে এই মামলাগুলোর সমাধান করা হয়েছে কি না।' সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির নেতাকর্মীদের সাজা ও কারাদণ্ডের ঘটনায় বিচার বিভাগ বিশেষ করে নিম্ন আদালত সম্পর্কে জনগণের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে। আইন মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট আদালতের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছে কি না তা খতিয়ে দেখার জন্য আমি প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করছি।' গত মাসে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় সরকার হস্তক্ষেপ করে না। 'বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন,' বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ দিকে, গত এক মাসে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ৬১০ জনের মধ্যে গতকাল রোববার ৭৩ জনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ২০১৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকার বংশাল, কলাবাগান ও কোতোয়ালি এলাকায় নাশকতার মামলায় তাদের কারাগারে রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকার বংশাল থানায় দায়ের করা এক মামলায় বিএনপির ২৫ নেতাকর্মীকে পৃথক দুই ধারায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদী এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় কোনো আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। বিচার চলাকালে রাষ্ট্রপক্ষের চার জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। মামলার নথি অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বংশাল থানা এলাকায় মিছিল বের করে বিএনপি। বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অনুমতি ছাড়াই আহমদ বাওয়ানী স্কুলের সামনে জড়ো হন। তারা যানবাহন ও দোকানপাট ভাঙচুর করেন। ২০১৩ সালের নভেম্বরে কলাবাগানে নাশকতার দায়ে ঢাকার আরেকটি আদালত ৪০ বিএনপি নেতাকর্মীকে দেড় বছরের কারাদণ্ড দেন। এ মামলায় ২৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী হায়দার। মামলার বিচার চলাকালে রাষ্ট্রপক্ষের ছয় জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ৫০ থেকে ৬০ বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মী ১৮ দলীয় জোটের কর্মসূচি চলাকালে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও তিন থেকে চারটি ককটেল নিক্ষেপ করে। তারা সেখানে কর্তব্যরত পুলিশকে দায়িত্ব পালনে বাধা দেন। এ ছাড়াও, অবরোধে নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর কোতোয়ালি থানার আরেক মামলায় বিএনপির আট নেতাকর্মীকে দেড় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন। এ মামলায় ১২ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়। মামলার বিচার চলাকালে রাষ্ট্রপক্ষের চার জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৫ সালের ১০ জানুয়ারি বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধের সময় আসামিরা কোতোয়ালির বাবুবাজার মাজার এলাকায় বিনা অনুমতিতে জড়ো হয়ে একটি কাভার্ড ভ্যানে আগুন দেন।
নাশকতা মামলায় রাজধানীতে কয়েক বছর আগে দায়ের করা মামলায় গত এক মাসে বিএনপি-জামায়াত ও এদের অঙ্গ সংগঠনের অন্তত ৬১০ নেতাকর্মীকে নানান মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
দেশে গণতন্ত্র-আইনের শাসন না থাকলে মানবাধিকার থাকে না: নুরুল হক নুর
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, দেশে গণতন্ত্র-আইনের শাসন না থাকলে মানবাধিকার থাকে না। দেশে মানবাধিকার নেই, তাই মানবাধিকার দিবসে রাস্তায় নামতে হয়েছে। গুম-খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় ভিন্নমতের মানুষকে গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত গণঅধিকার পরিষদের র‍্যালির আগে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় রাজধানীর বিজয়নগর পানিরট্যাংকির সামনে সমাবেশ শেষে র‍্যালি বের হয়। পল্টন মোড়, প্রেসক্লাব, হাইকোর্ট মোড়ের কদম ফোয়ারা, দৈনিক বাংলা, ফকিরাপুল, বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়ক ও নাইটিংগেল মোড়ে ঘুরে পানিরট্যাংকির মোড়ে এসে শেষ হয় র‌্যালি। সমাবেশে নুরুল হক নুর  বলেন, '১৯৭১ সালে আমরা একটা স্বাধীন ভূখণ্ড পেলেও স্বাধীনতার মূল উদ্দেশ্য রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক, সামাজিক মুক্তি অর্জন করতে পারিনি। এদেশের নির্বাচনে কারা সরকার গঠন করবে, কারা বিরোধী দল হবে, কারা এমপি হবে সেটা ঠিক করে দিচ্ছে পাশের দেশ।' 'সরকার দেশের নিজস্ব কাঁচামালের পাট, চিনি, চামড়া শিল্প ধ্বংস করেছে। এখন ভারতীয় ষড়যন্ত্রে রপ্তানি খাতের সোনার ডিম পাড়া হাঁস গার্মেন্টসকেও ধ্বংসের দিকে নিচ্ছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিউজ হয়েছে গার্মেন্টস শিল্পের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে', যোগ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, 'বিরোধী দল দমনে পুলিশ এখন রক্ষীবাহিনীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে র‍্যাবের মতো পুলিশের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আসবে।' সমাবেশে সঞ্চালনা করেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ। সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁনসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য দেন।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, দেশে গণতন্ত্র-আইনের শাসন না থাকলে মানবাধিকার থাকে না। দেশে মানবাধিকার নেই, তাই মানবাধিকার দিবসে রাস্তায় নামতে হয়েছে।
‘২০ ডিসেম্বর সিলেটে জনসভা দিয়ে আ. লীগের প্রচারণা শুরু করবেন শেখ হাসিনা’
আগামী ২০ ডিসেম্বর সিলেট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার দলের ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ তথ্য জানান। ওবায়দুল কাদের বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী সিলেটে হযরত শাহজালাল ও হযরত শাহ পরানের মাজার জিয়ারত করে একটি মহাসমাবেশে যোগ দেবেন। এই মহাসমাবেশের মাধ্যমে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন।' তিনি অভিযোগ করেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের সব রেকর্ড ভঙ্গকারী বিএনপির মুখে মানবাধিকারের কথা মানায় না। তার ভাষ্য, 'বিএনপি আজও দাবি করেছে যে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার থাকা অবস্থায় বাংলাদেশ মানবাধিকার লঙ্ঘনে প্রথম অবস্থানে রয়েছে। অথচ, মানবাধিকার লঙ্ঘনে তারা যে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে তা বর্তমান বিশ্বে অদ্বিতীয়। তারা কীভাবে মানবাধিকারের কথা বলে? তাদের কোনো লজ্জা নেই।' কিছু আসন থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারে জাতীয় পার্টির দাবির বিষয়ে প্রশ্ন করলে ওবায়দুল কাদের জানান, সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না।
আগামী ২০ ডিসেম্বর সিলেট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
না. গঞ্জে বিএনপিপন্থী আইনজীবী লাঞ্ছিত, ৪ মহিলাদল কর্মী আটক
নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালত চত্বরে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের এক নেতা। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে বিএনপির জেলা ও মহানগর কমিটির ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই ঘটনা ঘটে। লাঞ্ছিত অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক নয়ন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক। মানববন্ধনটি শুরু হওয়ার কয়েক মিনিট পরেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সমর্থক আইনজীবীরা এতে বাধা দিলে এটি পণ্ড হয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১২টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাশে আইনজীবী সমিতির ভবনের সামনে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির ব্যানারে মানববন্ধনটি শুরু হয়। শুরুতে বক্তব্য দেন অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক। তিন থেকে চার মিনিটের মধ্যেই নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জেলা তাঁতিলীগের সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহসীন মিয়া আইনজীবী সমিতির ভবন থেকে বেরিয়ে মানববন্ধনটিতে বাধা দিয়ে ব্যানার ছিনিয়ে নেন। এ সময় জুয়েল ও মোহসীনকে দেখা যায় ওমর ফারুককে ধাক্কা দিতে দিতে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বের করে দিতে। যদিও ঘটনাস্থলে সকাল থেকেই বিপুল সংখ্যক পুলিশ উপস্থিত ছিল। এই ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। এদিকে, ঘটনার কিছুক্ষণ পর আদালত চত্বর থেকে বিএনপির ৪ নারী কর্মীকে আটক করে ডিবি সদস্যরা। আটক নারীরা ওই মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন। এই বিষয়ে জেলা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান বলেন, 'তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।' অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক নয়ন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে ওই মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন মিথ্যা মামলায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। কিন্তু আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। মানবাধিকার দিবসে এই ধরনের কর্মকাণ্ডের বিচার জাতির কাছে দিয়ে রাখলাম।' অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাসান ফেরদৌস জুয়েল সাংবাদিকদের বলেন, 'বার ভবনের সামনে বহিরাগতদের নিয়ে এক আইনজীবী রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। আইনজীবীদের নিরাপত্তার জন্য আমরা তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিয়েছি।'
নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালত চত্বরে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের এক নেতা।
‘গুম-খুন বিএনপি শুরু করেছিল, আমরা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করেছি’
বিএনপির সময় গুম-খুন শুরু হয়েছিল উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, আমরা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করেছি। আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের আগের দিন থেকে হামলা-ভাঙচুর-অগ্নি সংযোগের প্রসঙ্গ তুলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, ২০১৪ সালে তারা যেভাবে আতঙ্ক সৃষ্টি শুরু করেছি। অগ্নি সন্ত্রাস শুরু করেছি, তারই একই পুনরাবৃত্তি তারা ঘটাল। এগুলো যারা করে, তারা আবার মানবাধিকারের কথা বলে। তারা আবার নানান ধরনের কথা বলে। তাদেরকে রাজনীতি করতে দেওয়া হয় না—এসব কথা বলে। এগুলো শুনলে মনে হয়, আমরা কোন যুগে বসবাস করছি! আমাদের পুলিশ বাহিনী চরম ধৈর্য্যের সঙ্গে এগুলো মোকাবিলা করেছে। তারা অনেক আহত হয়েছে। 'আজকে প্রশ্ন আসে খুন-গুম। খুন-গুমের যে দৃশ্যগুলো আপনারা দেখেছেন, এগুলো সেই আমলে হয়েছে। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত যদি হিসাব করেন, খুন-গুমের সংখ্যা যদি যোগ করেন. তাহলে আপনারা নিজেরাই আঁতকে উঠবেন,' বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, 'ঘটনাগুলো অনেকেই হয়তো ভুলে গেছেন। আমি তাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, আমাদের খুন-গুম শুরু করেছিলেন তারা। আমরা এগুলো বন্ধ করে আজকে একটা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করেছি।' ২৮ তারিখের ঘটনা ঢাকায় ঘটেছে কিন্তু গ্রামে বিএনপির যারা আছেন, তালিকা ধরে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনেকেই প্রশ্ন করছেন দেশে বিএনপি করা বা সমর্থন করা কি অপরাধ—এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'সারা বাংলাদেশ থেকে তাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে এসেছে। এমন কোনো থানা নেই, যে থানার বিএনপি নেতাকর্মীরা এখানে আসেনি। প্রথমেই তারা...আমাদের ডিএমপি আধুনিক কিছু ক্যামেরা বসিয়েছিল। এই ক্যামেরাগুলো বিনষ্ট করে দিয়েছিল। তারা মনে করেছিল, ক্যামেরা বিনষ্ট করলেই বোধ হয় আমরা কিছু পাব না। 'এটা ঘটাতে পারে আমরা জানতাম, সে জন্যই আমরা ড্রোনের সাহায্য নিয়েছিলাম। কতজন লোক উপস্থিত ছিল, হেড কাউন্ট কিন্তু আমাদের কাছে রয়েছে। কোথায় ঘটনাগুলো হয়েছে, আমাদের ছবিগুলো এত সুন্দর এসেছে! আমরা হাই পাওয়ার ক্যামেরাগুলো আমরা ব্যবহার করেছিলাম। কারা কারা পিটিয়েছে, কারা কোন জায়গা থেকে এসেছে, সবগুলো আমাদের ক্যামেরায় রয়ে গেছে,' বলেন আসাদুজ্জামান খান। তিনি আরও বলেন, 'ক্যামেরা সার্চ করে যারা যারা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল চিহ্নিত করে আমরা সে যেখানেই থাকুক, যদি সাতক্ষীরা থেকে এসে থাকে; আমরা সাতক্ষীরা তাদের চেহারা পাঠিয়ে দিয়েছি, তারা চিহ্নিত করে শনাক্ত করছে। এখানে অন্যায়ভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। যারা সম্পৃক্ত হয়েছিলেন, তাদের ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।' স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'এখানে দুই লাখ লোকের সমাবেশ ঘটিয়েছিল, হেড কাউন্ট করে আমরা যেটা দেখেছি। পাশাপাশি আরও দুএকটা ছোট ছোট দল অনুষ্ঠান করেছিল। ড্রোনের মাধ্যমে চেহারাগুলো আমাদের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।'
বিএনপির সময় গুম-খুন শুরু হয়েছিল উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, আমরা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করেছি।
নাশকতা মামলায় বিএনপির ২৫ নেতাকর্মীর ৩ বছরের কারাদণ্ড
রাজনৈতিক সহিংসতার অভিযোগে রাজধানীর বংশাল থানায় করা মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ২৫ নেতাকর্মীকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মামলায় দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে নগরীর ৬৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. তাইজুদ্দিন ওরফে 'লম্বা' তাইজু ও মহিলা দলের ঢাকা দক্ষিণ সিটির সভাপতি রাজিয়া আলম ওরফে রাজিয়া সুলতানা রয়েছেন। ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ শেখ সাদীর আদালতে আসামিদের অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করা হয়। রায় ঘোষণার আগে ম্যাজিস্ট্রেট তাদের জামিন বাতিল করে পলাতক ঘোষণা করেন এবং সাজা দেন। ম্যাজিস্ট্রেট তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করেন এবং বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আদালতের আদেশ কার্যকর করার নির্দেশ দেন। তাদের গ্রেপ্তার বা আত্মসমর্পণের দিন থেকে তাদের শাস্তি কার্যকর হবে বলে ম্যাজিস্ট্রেট তার রায়ে বলেছেন। এর আগে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষ তাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করে এবং মামলার অভিযোগকারীসহ প্রসিকিউশনের তিন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন আদালত। মামলার এজাহারে বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বিকাল পৌনে ৪টার দিকে রাজধানীর বংশাল এলাকার আহমেদ বাওয়ানী স্কুলের সামনে তাইজুর নেতৃত্বে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের একদল নেতা-কর্মী জড়ো হন। তারা যানবাহন, দোকানপাট ভাঙচুর করে এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় তাইজু, রাজিয়াসহ ২৩ জনকে আসামি করে বংশাল থানায় মামলা করে পুলিশ। তদন্তের পর, পুলিশ ২০১৯ সালের ৩০ জুন তাদের বিরুদ্ধে একটি চার্জশিট জমা দেয়। ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগ গঠন করেন।
রাজনৈতিক সহিংসতার অভিযোগে রাজধানীর বংশাল থানায় করা মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ২৫ নেতাকর্মীকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
‘আমরা কি চোর-ডাকাত? পুলিশ পিঠমোড়া দিয়ে হাতকড়া পরায়?’
মানিকগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি ও মানিকগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন আহম্মেদ যাদু বলেছেন, 'পুলিশ আমাদের ধরে দুই হাত পেছনে দিয়ে হ্যান্ডক্যাপ (হাতকড়া) লাগিয়ে আটক করে নিয়ে যায়। পুলিশ যে আচরণ করে আমাদের সাথে! আমরা দেশের মানুষের মানবাধিকার, ভোটাধিকারের জন্য আন্দোলন করছি। এটা কী আমাদের অপরাধ হয়েছে? 'আমরা কী চোর-ডাকাত? আমরা কী অন্যায় করেছি?' আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আজ রোববার সকালে মানিকগঞ্জ জেলা শহরের বান্দুটিয়া বাজার এলাকায় সড়কে জেলা বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। সম্প্রতি কারামুক্ত এই নেতা বলেন, 'লগি-বৈঠা দিয়া মানুষ মারে তাতে কিছু হয় না। আমরা গণতন্ত্র বাঁচানোর জন্য আন্দোলন করছি। সুষ্ঠু ভোটের জন্য আন্দোলন করছি। আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন থেকে গ্রেপ্তার করছে। দুই দিন জেলাখানায় থাইকা আসেন (পুলিশকে উদ্দেশ্য করে) জেলখানায় যে কত কষ্ট তা বুঝবেন।' কথা বলার একপর্যায়ে কেঁদে ফেলেন তিনি। পৌনে এক ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবির, দপ্তর সম্পাদক আরিফ হোসেন লিটন, জেলা মহিলা দলের সভাপতি সাবিহা হাবিব, জেলবন্দী যুবদল নেতা ইঞ্জিনিয়ার রাকিবুল ইসলাম বাবুর স্ত্রী নুসরাত জাহান নিলা প্রমুখ। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবির বলেন, শত বাধা ও গ্রেপ্তার আতঙ্ক নিয়েও জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের সর্বনিম্ন স্থানে নিয়ে গেছে। দেশের মানুষ এই একতরফা নির্বাচন হতে দেবে না, হতে দেওয়া হবে না।'
মানিকগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি ও মানিকগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন আহম্মেদ যাদু বলেছেন, 'পুলিশ আমাদের ধরে দুই হাত পেছনে দিয়ে হ্যান্ডক্যাপ (হাতকড়া) লাগিয়ে আটক করে নিয়ে যায়। পুলিশ যে আচরণ করে আমাদের সাথে! আমরা দেশের মানুষের মানবাধিকার, ভোটাধিকারের জন্য আন্দোলন করছি। এটা কী আমাদের অপরাধ হয়েছে? 'আমরা কী চোর-ডাকাত? আমরা কী অন্যায় করেছি?'
‘ছেলেকে, মাকে, ভাইকে, বোন কিংবা বাবাকে নিয়ে যাচ্ছে, মুক্তিপণ দাবি করে’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেছেন, গত ২৮ অক্টোবরের পর সরকার আমাদের প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। অনেক ভাই ও বোনেরা ঘরে ঘুমাতে পারে না। ছেলেকে না পেলে মাকে, ভাইকে, বোন কিংবা বাবাকে নিয়ে যাচ্ছে। অনেককে ধরে নিয়ে যায় মুক্তিপণ দাবি করে। আজ রোববার রাজধানীর প্রেসক্লাবের সামনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। সেলিমা রহমান বলেন, 'আমরা রাজপথে আছি, রাজপথে থাকব। মিছিলে মিছিলে বাংলাদেশ ভরে দেবো। তবুও আমরা এই সরকারের নির্বাচন মানব না। বাংলাদেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে আপনারা কেউ (আওয়ামী লীগ) টিকতে পারবেন না।' জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'এ দেশ বাংলাদেশের মানুষের। আপনারা রাজপথে নেমে আসুন, প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি, তারা লাঠিয়াল বাহিনী, হেলমেট বাহিনী তৈরি করে জনগণের ওপর অত্যাচার করছে। এটা বেশিদিন চলবে না।' তিনি বলেন, 'গত ২৮ অক্টোবরের পর আমাদের প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। অনেক ভাই ও বোনেরা ঘরে ঘুমাতে পারে না। ছেলেকে না পেলে মাকে, ভাইকে, বোন কিংবা বাবাকে নিয়ে যাচ্ছে। অনেককে ধরে নিয়ে যায় এবং মুক্তিপণ দাবি করে।' বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, 'কারাগারে বিএনপির নেতাকর্মীদের ন্যায্য অধিকার দেওয়া হচ্ছে না। আজ দেশের বিচার বিভাগ চলছে একজনের নির্দেশে। বিশ্বের কোথাও বাংলাদেশের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘন নেই। সরকার বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ অনেকগুলো কার্যালয় বন্ধ করে রেখেছে।' 'আজ ডান-বাম সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। শিগগির বাংলাদেশের জনগণ বর্তমান আওয়ামী সরকারের পতন ঘটাবে,' যোগ করেন সেলিমা রহমান। সকাল ১১টায় এ মানববন্ধন শুরু হয়ে শেষ হয় দুপুর ১২টায়। গুম-খুনের শিকার বিএনপি নেতাকর্মীদের স্বজনরা ছাড়াও এতে অংশ নেন কারাবন্দি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্ত্রী রাহাত আরা বেগম, মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস, নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী।। সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল প্রমুখ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেছেন, গত ২৮ অক্টোবরের পর সরকার আমাদের প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। অনেক ভাই ও বোনেরা ঘরে ঘুমাতে পারে না। ছেলেকে না পেলে মাকে, ভাইকে, বোন কিংবা বাবাকে নিয়ে যাচ্ছে। অনেককে ধরে নিয়ে যায় মুক্তিপণ দাবি করে।
হবিগঞ্জে পুলিশ-বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ
হবিগঞ্জ শহরে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আজ রোববার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে হবিগঞ্জে বিএনপির মানববন্ধনকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ বাধে। হবিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অজয় দেব দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এখনও সংঘর্ষ চলছে। তাই বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না। এখন টিভির হবিগঞ্জ প্রতিনিধি কাজল সরকার জানান, সংঘর্ষে দেশ টিভির প্রতিনিধি আমির হামজাসহ ২ জন আহত হয়েছেন। তারা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হবিগঞ্জ শহরে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে।