title
stringlengths 10
148
| text
stringlengths 14
34.6k
| summary
stringlengths 1
7.08k
|
---|---|---|
৯৬ আসনে জয় পেয়ে ইমরান সমর্থিত স্বতন্ত্ররা এগিয়ে, পিএমএল-এন ৭০, পিপিপি ৫৩ | পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে ২৬৫ আসনের মধ্যে ২৪৪ আসনের প্রাথমিক ফলাফলে ৯৬ আসনে জয় নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
অপরদিকে, নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) জয় পেয়েছে ৭০ আসনে এবং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫৩ আসন।
শুক্রবার রাত ১২টার পর জিও নিউজের লাইভ আপডেটে এ তথ্য জানানো হয়।
আরওনওয়াজের দলের বিরুদ্ধে ‘ভোট কারচুপি’র অভিযোগ, কাল ইমরানের সঙ্গে দেখা করবে পিটিআই
নির্বাচনে 'বিজয়' দাবি ইমরানের খানের
পাকিস্তানের কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান শুক্রবার নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি একটি অডিও-ভিজ্যুয়াল বার্তায় নির্বাচনে বিজয় দাবি করেছেন।
রয়টার্স বলছে, বার্তায় নওয়াজ শরিফের 'বিজয় অর্জনের' দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে ইমরান খান তার সমর্থদের জয় উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন।
আরওকোয়ালিশন ছাড়াই সরকার গঠনের আশা ইমরানের দল পিটিআইয়ের
গতকাল বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ২৬৫ আসনে (একটি স্থগিত) ভোটগ্রহণ হয়। এককভাবে কোনো দলের সরকার গঠনে প্রয়োজন হবে ১৩৪ আসন।
দেশটির জাতীয় পরিষদে মোট আসন ৩৩৬টি। এরমধ্যে ২৬৬ আসনে সরাসরি ভোটগ্রহণ হয়। আর ৬০টি আসন সংরক্ষিত নারী ও ১০টি সংরক্ষিত সংখ্যালঘুদের জন্য।
আরওজোট সরকার গঠনে যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন নওয়াজ শরিফ
নির্বাচনে 'বিজয়' দাবি ইমরানের খানের
পাকিস্তানের কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান শুক্রবার নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি একটি অডিও-ভিজ্যুয়াল বার্তায় নির্বাচনে বিজয় দাবি করেছেন।
রয়টার্স বলছে, বার্তায় নওয়াজ শরিফের 'বিজয় অর্জনের' দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে ইমরান খান তার সমর্থদের জয় উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন।
আরওকোয়ালিশন ছাড়াই সরকার গঠনের আশা ইমরানের দল পিটিআইয়ের
গতকাল বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ২৬৫ আসনে (একটি স্থগিত) ভোটগ্রহণ হয়। এককভাবে কোনো দলের সরকার গঠনে প্রয়োজন হবে ১৩৪ আসন।
দেশটির জাতীয় পরিষদে মোট আসন ৩৩৬টি। এরমধ্যে ২৬৬ আসনে সরাসরি ভোটগ্রহণ হয়। আর ৬০টি আসন সংরক্ষিত নারী ও ১০টি সংরক্ষিত সংখ্যালঘুদের জন্য।
আরওজোট সরকার গঠনে যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন নওয়াজ শরিফ
পাকিস্তানের কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান শুক্রবার নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি একটি অডিও-ভিজ্যুয়াল বার্তায় নির্বাচনে বিজয় দাবি করেছেন।
রয়টার্স বলছে, বার্তায় নওয়াজ শরিফের 'বিজয় অর্জনের' দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে ইমরান খান তার সমর্থদের জয় উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন।
আরওকোয়ালিশন ছাড়াই সরকার গঠনের আশা ইমরানের দল পিটিআইয়ের
গতকাল বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ২৬৫ আসনে (একটি স্থগিত) ভোটগ্রহণ হয়। এককভাবে কোনো দলের সরকার গঠনে প্রয়োজন হবে ১৩৪ আসন।
দেশটির জাতীয় পরিষদে মোট আসন ৩৩৬টি। এরমধ্যে ২৬৬ আসনে সরাসরি ভোটগ্রহণ হয়। আর ৬০টি আসন সংরক্ষিত নারী ও ১০টি সংরক্ষিত সংখ্যালঘুদের জন্য।
আরওজোট সরকার গঠনে যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন নওয়াজ শরিফ
গতকাল বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ২৬৫ আসনে (একটি স্থগিত) ভোটগ্রহণ হয়। এককভাবে কোনো দলের সরকার গঠনে প্রয়োজন হবে ১৩৪ আসন।
দেশটির জাতীয় পরিষদে মোট আসন ৩৩৬টি। এরমধ্যে ২৬৬ আসনে সরাসরি ভোটগ্রহণ হয়। আর ৬০টি আসন সংরক্ষিত নারী ও ১০টি সংরক্ষিত সংখ্যালঘুদের জন্য।
আরওজোট সরকার গঠনে যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন নওয়াজ শরিফ
| পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে ২৬৫ আসনের মধ্যে ২৪৪ আসনের প্রাথমিক ফলাফলে ৯৬ আসনে জয় নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। |
নওয়াজের দলের বিরুদ্ধে ‘ভোট কারচুপি’র অভিযোগ, কাল ইমরানের সঙ্গে দেখা করবে পিটিআই | নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) বিরুদ্ধে ভোটে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ এনেছে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)।
এজন্য নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে তারা আগামীকাল শনিবার দলের সিনিয়র নেতৃত্বের সঙ্গে পরামর্শ করবে এবং দুর্নীতির দায়ে কারাগারে বন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করবে বলে জানিয়েছে।
আজ শুক্রবার রাতে বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পিটিআই জানায়, নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল-এন যতগুলো আসনে জয় পেয়েছে, তার সবগুলোতেই 'ভোট কারচুপি' হয়েছে।
নির্বাচনে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার বিষয়ে নওয়াজ শরিফের দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে পিটিআই বলছে, তিনি 'নির্লজ্জভাবে মিথ্যাচার' করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে ২৬৫ আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল ভোটের ফল প্রকাশ করা হয়নি।
আজ শুক্রবার রাতে জিও নিউজ জানিয়েছে, ২৪১ আসনের ফলাফলে ইমরান খান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৯৬টিতে জয়লাভ করেছেন।
এ ছাড়া, নওয়াজ শরিফের দল জিতেছে ৬৯টিতে এবং পিপিপি জিতেছে ৫২ আসনে।
আরওকোয়ালিশন ছাড়াই সরকার গঠনের আশা ইমরানের দল পিটিআইয়ের
ইমরান খানের দলের তথ্য সচিব ঘোষণা করেছেন যে, পিটিআই দেশের কেন্দ্রের পাশাপাশি খাইবার-পাখতুনখাওয়া এবং পাঞ্জাব জেলায় 'একক বৃহত্তম রাজনৈতিক শক্তি' হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
পিটিআই নেতা রউফ হাসান বলেন, 'ইমরান খানকে পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য জনগণ গর্জনের সঙ্গে অনুমোদন করেছেন।'
তিনি বলেন, 'ক্ষমতাধরদের অবশ্যই জনগণের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাতে হবে। এই সিদ্ধান্ত পাল্টে দেওয়ার কোনো প্রচেষ্টা হলে পরিণতি হবে মারাত্মক।'
আরওজোট সরকার গঠনে যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন নওয়াজ শরিফ
ইমরান খানের দলের তথ্য সচিব ঘোষণা করেছেন যে, পিটিআই দেশের কেন্দ্রের পাশাপাশি খাইবার-পাখতুনখাওয়া এবং পাঞ্জাব জেলায় 'একক বৃহত্তম রাজনৈতিক শক্তি' হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
পিটিআই নেতা রউফ হাসান বলেন, 'ইমরান খানকে পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য জনগণ গর্জনের সঙ্গে অনুমোদন করেছেন।'
তিনি বলেন, 'ক্ষমতাধরদের অবশ্যই জনগণের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাতে হবে। এই সিদ্ধান্ত পাল্টে দেওয়ার কোনো প্রচেষ্টা হলে পরিণতি হবে মারাত্মক।'
আরওজোট সরকার গঠনে যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন নওয়াজ শরিফ
| নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) বিরুদ্ধে ভোটে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ এনেছে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। |
জোট সরকার গঠনে যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন নওয়াজ শরিফ | পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলে এখন পর্যন্ত ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এগিয়ে থাকলেও অন্যদের নিয়ে জোট সরকার গঠনের ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রধান নওয়াজ শরিফ।
আজ শুক্রবার রাতে ডন ও জিও নিউজের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
লাহোরে পিএমএল-এনের সদর দপ্তরে প্রাক বিজয় ভাষণে নওয়াজ শরিফ বলেন, 'জোট সরকার গঠনের জন্য তিনি তার ছোট ভাই শাহবাজ শরিফকে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) আসিফ আলি জারদারি, জামিয়াত উলেমা ইসলাম–ফজলের (জেইউআই–এফ) ফজলুর রেহমান এবং মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম-পি) পাকিস্তানের খালিদ মকবুল সিদ্দিকীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছেন।'
তিনি বলেন, 'এজন্য আজ শাহবাজ শরিফ ও পিএমএল-এনের নেতা ইসহাক দার বৈঠকে বসবেন।'
আরওকোয়ালিশন ছাড়াই সরকার গঠনের আশা ইমরানের দল পিটিআইয়ের
নওয়াজ শরিফ বলেন, 'পিএমএল-এন লড়াই করতে চায়নি, কেননা এর ভার বহনের সক্ষমতা পাকিস্তানের নেই। এই মুহূর্তে পাকিস্তানের ১০ বছরের স্থিতিশীলতা প্রয়োজন।'
তিনি বলেন, 'পাকিস্তান বর্তমানে যে সংকটের মধ্যে রয়েছে, তা থেকে বের করে আনতে সব রাজনৈতিক দলের একসঙ্গে বসে সরকার গঠন করা দরকার। আমরা বারবার নির্বাচন করতে পারব না।'
তার দল স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ সব দলের ম্যান্ডেটকে সম্মান করে জানিয়ে নওয়াজ শরিফ আরও বলেন, 'বিধ্বস্ত পাকিস্তানকে পুনর্গঠন করতে আজ আমরা সবাইকে আমাদের সঙ্গে বসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমাদের উদ্দেশ্য কেবল একটি সুখী পাকিস্তান।'
আরওপাকিস্তানের নির্বাচন: ১০৬ আসনের ফলে এগিয়ে ইমরান খান সমর্থিত স্বতন্ত্ররা
নওয়াজ শরিফ বলেন, 'পিএমএল-এন লড়াই করতে চায়নি, কেননা এর ভার বহনের সক্ষমতা পাকিস্তানের নেই। এই মুহূর্তে পাকিস্তানের ১০ বছরের স্থিতিশীলতা প্রয়োজন।'
তিনি বলেন, 'পাকিস্তান বর্তমানে যে সংকটের মধ্যে রয়েছে, তা থেকে বের করে আনতে সব রাজনৈতিক দলের একসঙ্গে বসে সরকার গঠন করা দরকার। আমরা বারবার নির্বাচন করতে পারব না।'
তার দল স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ সব দলের ম্যান্ডেটকে সম্মান করে জানিয়ে নওয়াজ শরিফ আরও বলেন, 'বিধ্বস্ত পাকিস্তানকে পুনর্গঠন করতে আজ আমরা সবাইকে আমাদের সঙ্গে বসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমাদের উদ্দেশ্য কেবল একটি সুখী পাকিস্তান।'
| পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলে এখন পর্যন্ত ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এগিয়ে থাকলেও অন্যদের নিয়ে জোট সরকার গঠনের ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রধান নওয়াজ শরিফ। |
কোয়ালিশন ছাড়াই সরকার গঠনের আশা ইমরানের দল পিটিআইয়ের | ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) আশা করছে, দেশটির জাতীয় নির্বাচনে পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১৫০ আসনে জয়লাভ করবে এবং কোনো জোট ছাড়াই দলটি সরকার গঠন করবে।
পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গওহর আলী খান আজ শুক্রবার জিও নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, 'পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীরা সরকার গঠনের অবস্থানে আছে। আমরা পাকিস্তান পিপলস পার্টি বা পাকিস্তান মুসলিম লীগের (নওয়াজ) সঙ্গে যোগাযোগ করছি না।'
তার দাবি, পিটিআই নেতারা নির্বাচনে ১৫০টি আসনে জিতেছে এবং কেন্দ্রে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন পেতে সক্ষম হবে দলটি।
'আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে এবং পাঞ্জাবে সরকার গঠন করব,' বলেন ব্যারিস্টার গওহর।
তিনি আরও বলেন, 'খাইবার পাখতুনখোয়ায় পিটিআই স্পষ্টভাবে এগিয়ে আছে এবং সেখানেও সরকার গঠন করবে। পিটিআই সংসদে থাকবে এবং যথাযথ ভূমিকা পালন করবে।'
গতকাল বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে ২৬৫ আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল ভোটের ফল প্রকাশ করা হয়নি।
পিটিআই নেতা গওহর বলেন, 'স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পিটিআইয়ের সদস্য এবং তারা দলীয় নির্দেশের বিরুদ্ধে অন্য কোনো দলে যোগ দেবেন না।'
এর আগে নওয়াজের দল পিএমএল-এনের সিনিয়র নেতা ইসহাক দাবি করেন, জয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তার দলের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পিটিআই প্রধান ইমরান খানের পাশাপাশি, সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছেন না তার দলের প্রার্থীরাও। তাদের প্রতীক 'ক্রিকেট ব্যাট' বরাদ্দ দেয়নি দেশটির নির্বাচন কমিশন। স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ছেন পিটিআই প্রার্থীরা।
| ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) আশা করছে, দেশটির জাতীয় নির্বাচনে পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১৫০ আসনে জয়লাভ করবে এবং কোনো জোট ছাড়াই দলটি সরকার গঠন করবে। |
পাকিস্তানের নির্বাচন: ফল ঘোষণার শুরুতে কিছুটা এগিয়ে ইমরান খানের প্রার্থী | ইন্টারনেট বন্ধ, সহিংসতার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর শুরু হয়েছে ফল ঘোষণা।
এখন পর্যন্ত ১২টি আসনের ফলাফল জানিয়েছে পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন।
এর মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)–সমর্থিত প্রার্থীরা জয় পেয়েছে পাঁচটি আসনে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) চারটি আসনে জয় পেয়েছে। আর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) তিনটি আসনে জয় পেয়েছে।
পাকিস্তানি টেলিভিশনের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্বাচনের বেসরকারি ফলে ইমরান খানের সমর্থিত প্রার্থীরা এগিয়ে আছেন।
পাকিস্তানে বৃহস্পতিবার সাধারণ নির্বাচনে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
২৬৬টি আসনে ভোট হওয়ার কথা থাকলেও নির্বাচনের আগে দুর্বৃত্তের গুলিতে এক প্রার্থী নিহত হওয়ায় একটি আসনে ভোট স্থগিত করা হয়েছিল আগেই। তাই গতকাল ভোট হয়েছে ২৬৫ আসনে।
এতে প্রায় পাঁচ হাজারের বেশি প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে নারী প্রার্থীর সংখ্যা ৩১৩।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পিটিআই প্রধান ইমরান খানের পাশাপাশি সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছেন না তার দলের প্রার্থীরাও। তাদের পছন্দের প্রতীক 'ক্রিকেট ব্যাট' বরাদ্দ দেয়নি দেশটির নির্বাচন কমিশন। তাই স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ছেন পিটিআই প্রার্থীরা।
| ইন্টারনেট বন্ধ, সহিংসতার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর শুরু হয়েছে ফল ঘোষণা। |
ইমরান খানের প্রার্থীরা জয়ী হওয়ায় ফল প্রকাশে দেরি করা হচ্ছে: পিটিআই | ইন্টারনেট বন্ধ, সহিংসতার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে।
দেশটির নির্বাচন কমিশন বলেছিল যে, ইন্টারনেট বন্ধ থাকলেও এতে ফল প্রকাশে সমস্যা হবে না। সঠিক সময়ে ভোটের ফল প্রকাশ করা হবে।
বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ভোটের ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কোনো বক্তব্যও দেয়নি।
ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) অভিযোগ, দলটির নেতারা জয়ী হওয়ায় নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশে দেরি করা হচ্ছে।
পিটিআইয়ের জেনারেল সেক্রেটারি ওমর আইয়ুব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক ভিডিও বার্তায় বলেন, 'বেশ কয়েকটি সার্কেলে রিটার্নিং অফিসারদের অফিসের স্ক্রিন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।'
হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, 'জনগণের ম্যান্ডেটে "দরজা বন্ধ করে ষড়যন্ত্র" বা জালিয়াতি করা হলে ফলাফল খারাপ হবে।
পিটিআই কর্মীদের তিনি ভোটকেন্দ্রে থাকতে অনুরোধ করেন এবং ফলাফল পেলেই স্থান ত্যাগের আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, 'নির্বাচন কমিশনের উচিত নির্বাচনের ফল জালিয়াতির মতো কলঙ্কজনক কিছু না করে অবিলম্বে ফলাফল প্রকাশ নিশ্চিত করা।'
পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানের এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে করা একটি পোস্টেও ভোটারদের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় ত্যাগ না করার আহ্বান জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, 'আপনার ভোট পাহারা দিন। পুরো ফলাফল না নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিস থেকে বের হবেন না।'
'আজ রাতে ভোটের জাগরণ পাকিস্তানের বর্তমান প্রজন্মকে দাসত্ব থেকে মুক্ত করবে,' যোগ করা হয় এতে।
পাকিস্তানে বৃহস্পতিবার সাধারণ নির্বাচনে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
২৬৫টি আসনে প্রায় ৫ হাজার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নির্বাচনে।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পিটিআই প্রধান ইমরান খানের পাশাপাশি, সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছেন না তার দলের প্রার্থীরাও। তাদের পছন্দের প্রতীক 'ক্রিকেট ব্যাট' বরাদ্দ দেয়নি দেশটির নির্বাচন কমিশন। স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ছেন পিটিআই প্রার্থীরা।
| ইন্টারনেট বন্ধ, সহিংসতার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। |
‘৭ অক্টোবর’ অন্যের মানবতা ভূলুণ্ঠিতের লাইসেন্স নয়: ইসরায়েলকে ব্লিঙ্কেন | গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় এতদিন নীরব সমর্থন দিয়ে আসলেও এবার প্রকাশ্য সমালোচনা করেছেন দেশটির প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
গতকাল বুধবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার পর ব্লিঙ্কেন তিরস্কারের সুরে তাদের সতর্ক বলেন, 'অন্যদের মানবতাকে ভূলুণ্ঠিত করার লাইসেন্স ইসরায়েলের নেই।'
আজ বৃহস্পতিবার টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তেল আবিবে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্লিঙ্কেন বলেন, '৭ অক্টোবর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর উপায়ে ইসরায়েলিদের মানবতাকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছিল। তারপর থেকে প্রতিদিনই জিম্মিদের ওপর অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। তবে এটি অন্যদের মানবতাকে ভূলুণ্ঠিত করার লাইসেন্স হতে পারে না।'
তিনি বলেন, '৭ অক্টোবরের হামলার সঙ্গে গাজার অধিকাংশ বাসিন্দার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। গাজার যেসব পরিবারের বেঁচে থাকা ইসরায়েল থেকে সাহায্য বিতরণের ওপর নির্ভর করে, তারা আমাদের পরিবারের মতোই। তারা হলেন মা-বাবা, ছেলে-মেয়ে, যারা একটি ভালো জীবিকা চান, বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে চান, স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে চান। এরা তারাই। এটাই তারা চান।'
'আমরা পারি না, আমাদের এসব থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেওয়া উচিত নয়। আমরা আমাদের সাধারণ মানবতা থেকে দৃষ্টি সরাতে পারি না, এটা উচিত নয়', যোগ করেন তিনি।
বেসামরিক সুরক্ষার প্রতি আরও মনোযোগী হতে এবং গাজায় আরও ত্রাণ সহায়তা প্রবেশে ইসরায়েলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপ অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান ব্লিঙ্কেন।
| গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় এতদিন নীরব সমর্থন দিয়ে আসলেও এবার প্রকাশ্য সমালোচনা করেছেন দেশটির প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। |
বেলুচিস্তানে পৃথক বোমা বিস্ফোরণে নিহত অন্তত ২৮ | পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে পৃথক দুটি বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ২৮ জন নিহত এবং ৪০ জনের বেশি আহত হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরের পরে পিশিন ও কিলা সাইফুল্লাহ শহরে এ দুটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বলে পাকিস্তানি গণমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে।
পুলিশ জানায়, প্রথম বিস্ফোরণটি হয় পিশিন শহরে স্বতন্ত্র প্রার্থী আসফান্দিয়ার কাকারের নির্বাচনী অফিসের বাইরে।
এতে অন্তত ১৫ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছেন।
এর কিছুক্ষণ পরেই কিলা সাইফুল্লাহে দ্বিতীয় বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়।
শহরের ডেপুটি কমিশনার ইয়াসির বাজাই বলেন, জামিয়ার-ই-উলামার (ফজল) নির্বাচনী অফিসের বাইরে বিস্ফোরণে ১২ জন নিহত হয়েছেন।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের আগের দিনে এ বোমা বিস্ফোরণের খবরে দেশটির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার-উল-হক কাকার নিন্দা জানিয়েছেন,
তবে সরকার শান্তিপূর্ণভাবে সাধারণ নির্বাচন পরিচালনা করতে বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন তিনি।
| পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে পৃথক দুটি বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ২৮ জন নিহত এবং ৪০ জনের বেশি আহত হয়েছে। |
মস্কোতে ভারতীয় দূতাবাসে পাকিস্তানের গুপ্তচর, মিরাট থেকে গ্রেপ্তার | পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর গুপ্তচর হিসেবে কাজ করার অভিযোগে মস্কোতে ভারতীয় দূতাবাসের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে উত্তরপ্রদেশের সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াড (এটিএস)।
গ্রেপ্তার সতেন্দ্র সিওয়াল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাল্টি-টাস্কিং স্টাফ (এমটিএস) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাকে মিরাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এটিএস জানায়, গোপন সূত্রে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আইএসআইয়ের কর্মীরা ভারতীয় সেনাবাহিনীর সংবেদনশীল তথ্য প্রদানের বিনিময়ে আর্থিক প্রণোদনা দেওয়ার কথা বলে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীদের প্রলুব্ধ করছে। এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি বলে সংস্থাটি জানায়।
সতেন্দ্র সিওয়াল হাপুরের শাহমহিউদ্দিনপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাকে এই নেটওয়ার্কের মূলহোতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
সতেন্দ্র মস্কোর দূতাবাসে নিজের অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে গোপন নথিপত্র বের করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এসব অভিযোগ স্বীকার করেছেন বলে গোয়েন্দা পুলিশ জানায়।
| পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর গুপ্তচর হিসেবে কাজ করার অভিযোগে মস্কোতে ভারতীয় দূতাবাসের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে উত্তরপ্রদেশের সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াড (এটিএস)। |
পাকিস্তানে নির্বাচনের ৩ দিন আগে পুলিশ স্টেশনে হামলা, নিহত ১০ | পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনের তিন দিন আগে একটি পুলিশ স্টেশনে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, সোমবার গভীর রাতে ডেরা ইসমাইল খান শহরের চোদওয়ান পুলিশ স্টেশনে হামলা হয়েছে। এতে ১০ পুলিশ সদস্য নিহত এবং আরও ছয় জন আহত হয়েছেন।
আঞ্চলিক পুলিশ অফিসার (আরপিও) নাসির মেহমুদ হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত কয়েকদিন ধরে খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তানে একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে।
পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) এবং নিরাপত্তা বাহিনী গত সপ্তাহে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছে। নির্বাচন নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানায় তারা।
| পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনের তিন দিন আগে একটি পুলিশ স্টেশনে হামলার ঘটনা ঘটেছে। |
ইয়েমেনে হামলা হুতিদের প্রতি ‘স্পষ্ট বার্তা’: যুক্তরাষ্ট্র, উচিত জবাব দেবো: হুতি মুখপাত্র | ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের ৮৫ লক্ষ্যবস্তুতে হামলার একদিন পর ইয়েমেনের ১৩টি জায়গায় ইরান–সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের ৩৬টি লক্ষ্যবস্তুতে যৌথ হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।
গতকাল শনিবার রাতে এই হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি। হামলায় হুতিদের ভূগর্ভস্থ অস্ত্র মজুত স্থাপনা, ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা ও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ সরঞ্জাম, আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এবং রাডার ব্যবস্থা-সংশ্লিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়েছে।
হামলার কারণ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'এটি হুতিদের উদ্দেশে একটি স্পষ্ট বার্তা যে, তারা যদি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য জাহাজ এবং নৌযানে তাদের অবৈধ হামলা বন্ধ না করে, তবে তাদের আরও পরিণতি সইতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জলপথে জীবন এবং বাণিজ্যের অবাধ প্রবাহ রক্ষা করতে দ্বিধা করব না।'
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্রান্ট শ্যাপস বলেছেন, 'লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক এবং সামরিক জাহাজে হুতিদের হামলা অবৈধ এবং অগ্রহণযোগ্য।'
'নিরপরাধ জীবন রক্ষার পাশাপাশি নৌ চলাচলের স্বাধীনতা রক্ষা আমাদের কর্তব্য', যোগ করেন তিনি।
এই হামলার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হুতিদের রাজনৈতিক ব্যুরোর মুখপাত্র মোহাম্মদ আল বুখাইতি বলেছেন, 'ইয়েমেনের বেশ কয়েকটি প্রদেশে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের যৌথ বোমাবর্ষণ আমাদের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন করবে না। আমরা নিশ্চিত করছি যে, গাজায় গণহত্যা বন্ধ ও সেখানকার বাসিন্দাদের ওপর থেকে অবরোধ তুলে না নেওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আমাদের সামরিক অভিযান চলবে। এজন্য যত মূল্য দিতে হয় দেবো।'
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) তিনি আরও বলেন, 'আমাদের যুদ্ধ নৈতিক। আমরা যদি গাজায় নিপীড়িতদের সমর্থনে হস্তক্ষেপ না করতাম, তাহলে মানুষের মধ্যে মানবতা থাকত না। ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের এই হামলা জবাবহীন থাকবে না। আমরা উত্তেজনার জবাব উত্তেজনার মাধ্যমেই দেবো।'
| ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের ৮৫ লক্ষ্যবস্তুতে হামলার একদিন পর ইয়েমেনের ১৩টি জায়গায় ইরান–সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের ৩৬টি লক্ষ্যবস্তুতে যৌথ হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। |
ইরাক-সিরিয়ায় ৩০ মিনিটের অপারেশন, নেপথ্যে মার্কিন বি-১ বোমারু বিমান | ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) ও ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ৮৫টিরও বেশি স্থাপনায় মাত্র ৩০ মিনিটে একযোগে সফল বিমান হামলা চালানোর দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ইরাক সরকারের মুখপাত্র বাসিম আলওয়াদী এক বিবৃতিতে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, 'ইরাকের সার্বভৌমত্বের ওপর নতুন এই আগ্রাসনে ১৬ জন নিহত এবং ২৫ জন আহত হয়েছেন।'
হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গেছে, গতকালের হামলায় কয়েকটি দূরপাল্লার বি-১ বোমারু বিমান ব্যবহার করা হয়েছে, যা মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত কোনো মার্কিন ঘাঁটি থেকে উড়ানো হয়নি, সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়িয়ে নেওয়া হয়েছে।
আজ শনিবার বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর ওয়েবসাইটে বি-১ বোমারু বিমানকে 'আমেরিকার দূরপাল্লার বোমারু বাহিনীর মেরুদণ্ড' হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এসব বিমানে ১২৫টিরও বেশি নির্ভুল নির্দেশিত যুদ্ধাস্ত্র বহন করা হয়।
বি-১ বোমারু বিমানের সহায়তা ছাড়াও ইরাক ও সিরিয়ায় হামলায় নির্ভুল নির্দেশিত (গাইডেড) ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনও ব্যবহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, হামলার লক্ষ্যবস্তুগুলোর মধ্যে ছিল সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র, সামরিক রসদভান্ডার এবং ড্রোন স্টোরেজ ইউনিট।
মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ঘাঁটি
ইরাক, জর্ডান ও সিরিয়ায় এক ডজনেরও বেশি ঘাঁটিতে মার্কিন সেনাবাহিনীর কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
বিবিসি বলছে, টাওয়ার ২২ নামে জর্ডানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মরুভূমিতে অবস্থিত এমনই এক মার্কিন সেনা ঘাঁটিতে সর্বশেষ ড্রোন হামলাটি হয়েছে। যে হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহতের পাশাপাশি আহত হন ৪১ জন।
এর আগে, পশ্চিম ইরাকের আল আসাদ বিমান ঘাঁটিতে মার্কিন সেনাদের ওপর হামলা হয়। এসব হামলার জন্য ইরান সমর্থিত মিলিশিয়াদের অভিযুক্ত করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
বর্তমানে জর্ডানে প্রায় তিন হাজার এবং ইরাকে আড়াই হাজারের মতো মার্কিন সেনা রয়েছে। অপরদিকে, সিরিয়ায় রয়েছে প্রায় ৯০০ মার্কিন সেনা। যদিও সিরিয়ার সরকার তার দেশে মার্কিন সেনা উপস্থিতির বিরোধিতার পাশাপাশি একে দখলদারিত্ব বলে অভিহিত করে আসছে।
যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য-জুড়ে আরও অনেক ঘাঁটি রক্ষণাবেক্ষণ করে, যার মধ্যে রয়েছে উপসাগরীয় তিনটি প্রধান বিমান ঘাঁটি এবং বাহরাইনের একটি বন্দর, যা মার্কিন নৌবাহিনীর কেন্দ্রীয় কমান্ড এবং মার্কিন পঞ্চম নৌবহরের সদর দপ্তর হিসেবে কাজ করে।
আরওইরাক-সিরিয়ায় সফল হামলার দাবি হোয়াইট হাউসের, ‘সুযোগ হাতছাড়া’ বললেন সাবেক মার্কিন সেনা
ইরাক, জর্ডান ও সিরিয়ায় এক ডজনেরও বেশি ঘাঁটিতে মার্কিন সেনাবাহিনীর কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
বিবিসি বলছে, টাওয়ার ২২ নামে জর্ডানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মরুভূমিতে অবস্থিত এমনই এক মার্কিন সেনা ঘাঁটিতে সর্বশেষ ড্রোন হামলাটি হয়েছে। যে হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহতের পাশাপাশি আহত হন ৪১ জন।
এর আগে, পশ্চিম ইরাকের আল আসাদ বিমান ঘাঁটিতে মার্কিন সেনাদের ওপর হামলা হয়। এসব হামলার জন্য ইরান সমর্থিত মিলিশিয়াদের অভিযুক্ত করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
বর্তমানে জর্ডানে প্রায় তিন হাজার এবং ইরাকে আড়াই হাজারের মতো মার্কিন সেনা রয়েছে। অপরদিকে, সিরিয়ায় রয়েছে প্রায় ৯০০ মার্কিন সেনা। যদিও সিরিয়ার সরকার তার দেশে মার্কিন সেনা উপস্থিতির বিরোধিতার পাশাপাশি একে দখলদারিত্ব বলে অভিহিত করে আসছে।
যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য-জুড়ে আরও অনেক ঘাঁটি রক্ষণাবেক্ষণ করে, যার মধ্যে রয়েছে উপসাগরীয় তিনটি প্রধান বিমান ঘাঁটি এবং বাহরাইনের একটি বন্দর, যা মার্কিন নৌবাহিনীর কেন্দ্রীয় কমান্ড এবং মার্কিন পঞ্চম নৌবহরের সদর দপ্তর হিসেবে কাজ করে।
| ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) ও ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ৮৫টিরও বেশি স্থাপনায় মাত্র ৩০ মিনিটে একযোগে সফল বিমান হামলা চালানোর দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। |
ইরাক-সিরিয়ায় সফল হামলার দাবি হোয়াইট হাউসের, ‘সুযোগ হাতছাড়া’ বললেন সাবেক মার্কিন সেনা | জর্ডানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহতের প্রতিক্রিয়ায় গতকাল শুক্রবার ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) ও ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ৮৫টিরও বেশি স্থাপনায় একযোগে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এ হামলাকে 'স্পষ্টতই সফল' দাবি করা হলেও সাবেক এক মার্কিন মেরিন সেনা বলেছেন, 'সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেছে।'
আজ শনিবার বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মিক মুলরয় নামের ওই সেনা বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগেই সম্ভবত আইআরজিসির বেশিরভাগ সদস্য সেসব স্থান ত্যাগ করেছিলেন।'
'কেউ কেউ বলতে পারেন যে, আমরা সত্যি সত্যিই ইরানের ওপর একটি শক্ত প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেছি', যোগ করেন তিনি।
গতকালের হামলার পর মার্কিন সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরাকে তিনটি ও সিরিয়ায় চারটি স্থানে ৮৫টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে একযোগে হামলা চালানো হয়েছে। লক্ষ্যবস্তুগুলোর মধ্যে ছিল সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র, সামরিক রসদভান্ডার এবং ড্রোন স্টোরেজ ইউনিট।
হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে গতকালের হামলাকে 'স্পষ্টতই সফল' দাবি করে বলা হয়েছে, দূরপাল্লার বি-১ বোমারু বিমানের সাহায্যে হামলায় সময় লেগেছে ৩০ মিনিট।
এসব হামলায় হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতির হিসাব দেয়নি কোনো পক্ষই। তবে এক ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট স্টাফের পরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডগলাস সিমস হামলা সফল হয়েছে বলে জানান।
| জর্ডানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহতের প্রতিক্রিয়ায় গতকাল শুক্রবার ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) ও ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ৮৫টিরও বেশি স্থাপনায় একযোগে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। |
লোহিত সাগরে মার্কিন জাহাজে হামলার দাবি হুতিদের, পাল্টা হামলা যুক্তরাষ্ট্রের | লোহিত সাগরের মূর্তিমান আতঙ্ক হুতিরা এবার মার্কিন এক বাণিজ্যিক জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর দাবি করেছে।
এর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ১০টি ড্রোনের সাহায্যে হুতিদের অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
আজ বৃহস্পতিবার বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হুতিরা বলছে, জাহাজটির নাম কেওআই, যা যুক্তরাষ্ট্র-পরিচালিত।
তবে মেরিটাইম সিকিউরিটি ফার্ম অ্যামব্রে জানিয়েছে, ইয়েমেনের এডেন বন্দরের দক্ষিণে পরিচালিত একটি জাহাজে বিস্ফোরণের তথ্য পাওয়া গেছে।
যদিও জাহাজটির নামসহ বিস্তারিত কিছু জানায়নি তারা।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেওআই একটি লাইবেরিয়ান-পতাকাবাহী কন্টেইনার জাহাজ, যা যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ওসিওনিক্স সার্ভিসেসের মাধ্যমে পরিচালিত। একই কোম্পানির জ্বালানি তেলবাহী জাহাজ মার্লিন লুয়ান্ডা গত শনিবার ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে লোহিত সাগরে চলমান বাণিজ্যিক জাহাজে একেরপর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। বর্তমানে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক জলপথ লোহিত সাগরে তারা মূর্তিমান আতঙ্ক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
হুতিদের সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারিয়া বুধবার জানান, মার্কিন বাণিজ্যিক জাহাজ কেওআই'র ওপর কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, 'জাহাজটি ইসরায়েলের দিকে যাচ্ছিল।'
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের মিলিটারি সেন্ট্রাল কমান্ড এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এডেন উপসাগরে মার্কিন নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে গুলি করে ইরানের তিনটি ড্রোন এবং হুতিদের একটি জাহাজ বিধ্বংসী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা হয়েছে। এসময় হতাহত এবং ক্ষয়ক্ষতির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
| লোহিত সাগরের মূর্তিমান আতঙ্ক হুতিরা এবার মার্কিন এক বাণিজ্যিক জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর দাবি করেছে। |
রাখাইনে শুক্রবারের গোলাগুলিতে অন্তত ১২ রোহিঙ্গা নিহত: জাতিসংঘ | মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত শুক্রবার দেশটির সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলিতে অন্তত ১২ রোহিঙ্গা নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছে।
এ তথ্য জানিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ গণহত্যা প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন অংশে বিদ্রোহীরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
ইতোমধ্যে চীন ও ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চলের সামরিক ঘাঁটি ও বাণিজ্য রুটের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী।
সেনাবাহিনীর কাছ থেকে ইতোমধ্যে রাখাইনের বেশিরভাগ অংশের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়েছে বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি।
বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেছেন, 'সামরিক অভ্যুত্থানের তিন বছর পর মিয়ানমারের ক্রমাগত অবনতিশীল মানবাধিকার সংকট এখন চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে। দেশটির জনগণের দুর্দশার দিকেও বিশ্ববাসীর যথেষ্ট মনোযোগ নেই।'
রাখাইন রাজ্যের ১৭টি শহরসহ দেশটির প্রায় ৭৪টি শহরে যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং ইন্টারনেট সেবা সম্পূর্ণ বন্ধ কিংবা আংশিক সচল।
বিবৃতিতে বলা হয়, 'গত বছরের নভেম্বরে দেশটিতে নতুন করে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাখাইন রাজ্য বিশেষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত ২৬ জানুয়ারি আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মধ্যে লড়াইয়ে হপন নিয়ো লেইক গ্রামে অন্তত ১২ রোহিঙ্গা নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।'
রোহিঙ্গা অধ্যুষিত ওই গ্রামে আরাকান আর্মি অবস্থান নিয়েছিল এবং সেনাবাহিনী বারবার সেখানে গোলাবর্ষণ করেছে। এতে গ্রামের অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, 'মিয়ানমারের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগী। সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র বিরোধীদের মধ্যে তুমুল যুদ্ধে ব্যাপক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছে।'
সূত্রের বরাত দিয়ে বিবৃতিতে জানানো হয়, গত অক্টোবর থেকে দেশটিতে ৫৫৪ জনের বেশি লোক মারা গেছে। ২০২৩ সালে সামগ্রিকভাবে সেনাবাহিনীর হামলায় ১৬০০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে, যা আগের বছরের থেকে প্রায় ৩০০ বেশি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত তিন বছরে সেনাবাহিনীর কাছে বন্দী থাকা অবস্থায় প্রায় ১ হাজার ২৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ভলকার তুর্ক বলেন, 'শুধু সামরিক নেতৃত্বের জবাবদিহি, রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি ও বেসামরিক শাসন পুনরুদ্ধারের ওপর জোর দেওয়ার মধ্য দিয়ে এই সংকটের সমাধান হবে।'
তিনি জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্রকে এ সংকট মোকাবিলার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। এর মধ্যে সেনাবাহিনীকে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন ঠেকাতে মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ অস্ত্র, জেটফুয়েল ও বৈদেশিক মুদ্রার প্রবেশ সীমিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
| মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত শুক্রবার দেশটির সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলিতে অন্তত ১২ রোহিঙ্গা নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছে। |
ইমরান খানের ১০ বছরের কারাদণ্ড | রাষ্ট্রের গোপনীয় তথ্য ফাঁস করার অভিযোগে দায়ের (সাইফার) মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত।
অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে স্থাপিত একটি বিশেষ আদালত আজ মঙ্গলবার এই রায় দেন।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন তাদের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কাছে থাকা একটি কূটনৈতিক নথি হারিয়ে গেছে বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
ইমরানের দল তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) অভিযোগ, ওই নথিতে ইমরানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি ছিল।
এর আগে, গত ৫ আগস্ট তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। দেশটির হাইকোর্ট অবশ্য ২৯ আগস্ট সাজা স্থগিত করেন। কিন্তু তথ্য ফাঁস (সাইফার) মামলায় তিনি জুডিশিয়াল কাস্টডিতে ছিলেন।
| রাষ্ট্রের গোপনীয় তথ্য ফাঁস করার অভিযোগে দায়ের (সাইফার) মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। |
সোমালি জলদস্যুদের হাতে আটক ইরানি জাহাজ ও ১৯ পাকিস্তানি ক্রু উদ্ধার | ভারতের রণতরী আইএনএস সুমিত্রা জলদস্যুদের হাতে আটক ১৯ পাকিস্তানি নাবিককে উদ্ধার করেছে। সোমবার সোমালিয়ার পূর্ব উপকূলে পাকিস্তানি নাবিক ও তাদের মাছ ধরার জাহাজটিকে অপহরণ করে জলদস্যুরা।
আজ মঙ্গলবার এনডিটিভি এই তথ্য জানিয়েছে।
ভারতের নৌবাহিনী জানিয়েছে, গত ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে জলদস্যুদের বিরুদ্ধে এটি দ্বিতীয় অভিযান।
১১ জন সশস্ত্র জলদস্যু ইরানের পতাকাবাহী মাছ ধরার জাহাজ এফভি আল নাঈমির ডেকে চড়ে বসেন এবং জাহাজের ১৯ ক্রুকে জিম্মি করেন। ক্রুদের সবাই পাকিস্তানি নাগরিক। ভারতের নৌবাহিনীর রণতরীটি এই মাছধরার জাহাজের গতিপথ রুদ্ধ করে দেয় এবং জিম্মিদের মুক্তি দিতে জলদস্যুদের বাধ্য করে।
পরবর্তীতে নৌবাহিনীর সদস্যরা জাহাজ পরিদর্শন করেন এবং ক্রুদের খোঁজখবর নেন।
এক দিন আগেই রণতরী আইএনএস সুমিত্রা ইরানের পতাকাবাহী অপর একটি মাছ ধরার জাহাজের সাহায্যের আবেদনে সাড়া দিয়েছিল। এফভি ইমান নামের জাহাজটিকেও সোমালি জলদস্যুরা অপহরণ করে। পরবর্তীতে ১৭ জন ইরানি ক্রুকে উদ্ধার করা হয়।
নৌবাহিনীর আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়, '৩৬ ঘণ্টার ব্যবধানে আইএনএস সুমিত্রা দ্রুত, অবিচল ও নিরলস উদ্যোগের মাধ্যমে দুইটি অপহরণকৃত মাছ ধরার জাহাজ ও জাহাজের ৩৬ ক্রু (১৭ ইরানি ও ১৯ পাকিস্তানি) উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। কোচি থেকে প্রায় ৮৫০ নটিক্যাল মাইল পশ্চিমে, দক্ষিণ আরব সাগরে এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এই উদ্যোগের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয় যাতে এই মাছধরার জাহাজগুলোকে পরবর্তীতে অপর কোনো বাণিজ্যিক নৌযানের বিরুদ্ধে জলদস্যুতায় 'মাদার শিপ' হিসেবে ব্যবহার করা না যায়'।
আইএনএস সুমিত্রা হচ্ছে ভারতের নৌবাহিণীর উপকূল প্রতিরক্ষা জাহাজ। এর মূল দায়িত্ব হচ্ছে সোমালিয়ার পূর্বাঞ্চল ও এডেন উপসাগরে জলদস্যুতা প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা অভিযান পরিচালনা করা।
| ভারতের রণতরী আইএনএস সুমিত্রা জলদস্যুদের হাতে আটক ১৯ পাকিস্তানি নাবিককে উদ্ধার করেছে। সোমবার সোমালিয়ার পূর্ব উপকূলে পাকিস্তানি নাবিক ও তাদের মাছ ধরার জাহাজটিকে অপহরণ করে জলদস্যুরা। |
ইউএনআরডব্লিউএর তহবিল বন্ধের সিদ্ধান্ত ‘অমানবিক’: অ্যামনেস্টি | মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অভিযোগ করেছে, বেশ কয়েকটি দেশের সরকারের ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের ত্রাণ ও শরণার্থী সংস্থাকে (ইউএনআরডব্লিউএ) নতুন করে তহবিল বন্ধের সিদ্ধান্ত অমানবিক।
আজ মঙ্গলবার আল জাজিরা এই তথ্য জানায়।
গত শুক্রবার জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত (আইসিজে) গাজায় হত্যা ও ধ্বংস বন্ধের জন্য ইসরায়েলকে সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়। সেদিনই জাতিসংঘের সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে হামাসের সঙ্গে হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ তোলে ইসরায়েল।
ইসরায়েল অভিযোগ তোলার পর জাতিসংঘের সংস্থাটিকে নতুন করে তহবিল দেওয়া সাময়িকভাবে বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে নয় দেশ—যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, স্কটল্যান্ড, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও সুইজারল্যান্ড। গতকাল এই তালিকায় যোগ হয়েছে নিউজিল্যান্ডের নাম।
সোমবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি দেশগুলোকে তাদের সিদ্ধান্ত বদলানোর অনুরোধ জানায়। তারা যুক্তি দেয়, এ ধরনের সিদ্ধান্ত '২০ লাখ ফিলিস্তিনির দুর্ভোগ আরও বাড়াবে। তারা ইতোমধ্যে গণহত্যা ও পরিকল্পিত দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে আছে।'
মানবাধিকার সংস্থাটি জানায়, 'ইতোমধ্যে দুর্দশাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর মাঝে মানবিক ত্রাণ বিতরণে ইউএনয়ারডব্লিউএ'র গুরত্বপূর্ণ ভূমিকাকে আমলে নিয়ে নরওয়ে, স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও বেলজিয়াম জানিয়েছে তারা তহবিল দেওয়া বন্ধ করবে না।'
অ্যামনেস্টির মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড জানান, ইউএনআরডব্লিউএকে তহবিল দেওয়া বন্ধ করে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্স 'লজ্জাজনক' কাজ করেছে।
অ্যামনেস্টির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'ইউএনআরডব্লিউএ ফিলিস্তিনিদের তাদের নিজ ভূখণ্ডে ফিরে আসার অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তা সত্ত্বেও ইসরায়েল ও ডানপন্থী সংগঠনগুলো বহু বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ক্ষুণ্ণ করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে'।
| মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অভিযোগ করেছে, বেশ কয়েকটি দেশের সরকারের ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের ত্রাণ ও শরণার্থী সংস্থাকে (ইউএনআরডব্লিউএ) নতুন করে তহবিল বন্ধের সিদ্ধান্ত অমানবিক। |
ইলন মাস্ককে টপকে বিশ্বের শীর্ষ ধনী বার্নার্ড আর্নল্ট, মুকেশ আম্বানি ১১তম | বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় ইলন মাস্ককে টপকে শীর্ষে উঠে এসেছেন ফরাসি ধনকুবের সিইও বার্নার্ড আর্নল্ট।
তিনি বিলাসবহুল পণ্য এলভিএমএইচ মোয়েত হেনেসি লুই ভিতনের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ২০৭.৬ বিলিয়ন ডলার।
ফোর্বস ম্যাগাজিন প্রকাশিত বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইলন মাস্কের নাম, তার মোট সম্পদের পরিমাণ ২০৪.৭ বিলিয়ন ডলার। তালিকায় তৃতীয় হয়েছেন জেফ বেজোস, তার মোট সম্পদের পরিমাণ ১৮১.৩ বিলিয়ন ডলার।
তালিকায় শীর্ষ দশে থাকা নয়জনই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। ১১তম স্থানে রয়েছেন ভারতের ধনকুবের মুকেশ আম্বানি, অর্থাৎ এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি তিনি। মুকেশ আম্বানির মোট সম্পদের পরিমাণ ১১০ বিলিয়ন ডলার।
ভারতের আরেক ধনকুবের গৌতম আদানি ১৬ তম স্থানে রয়েছেন, তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৭৯.২ বিলিয়ন ডলার।
ফোর্বসের রিয়েল-টাইম বিলিয়নেয়ারদের তালিকায় বিশ্বের শীর্ষ ১০ জন ধনী ব্যক্তি হলেন:
১. বার্নার্ড আর্নল্ট এবং তার পরিবার (ফ্রান্স), মোট সম্পদের পরিমাণ ২০৭.৬ বিলিয়ন ডলার
২. ইলন মাস্ক (যুক্তরাষ্ট্র), মোট সম্পদের পরিমাণ ২০৪.৭ বিলিয়ন ডলার
৩. জেফ বেজোস (যুক্তরাষ্ট্র), মোট সম্পদের পরিমাণ ১৮১.৩ বিলিয়ন ডলার
৪. ল্যারি এলিসন (যুক্তরাষ্ট্র), মোট সম্পদের পরিমাণ ১৪২.২ বিলিয়ন ডলার
৫. মার্ক জুকারবার্গ (যুক্তরাষ্ট্র), মোট সম্পদের পরিমাণ ১৩৯.১ বিলিয়ন ডলার
৬. ওয়ারেন বাফেট (যুক্তরাষ্ট্র), মোট সম্পদের পরিমাণ ১২৭.২ বিলিয়ন ডলার
৭. ল্যারি পেজ (যুক্তরাষ্ট্র), মোট সম্পদের পরিমাণ ১২৭.১ বিলিয়ন ডলার
৮. বিল গেটস (যুক্তরাষ্ট্র), মোট সম্পদের পরিমাণ ১২২.৯ বিলিয়ন ডলার
৯. সের্গেই ব্রিন (যুক্তরাষ্ট্র), মোট সম্পদের পরিমাণ ১২১.৭ বিলিয়ন ডলার
১০. স্টিভ বলমার (যুক্তরাষ্ট্র), মোট সম্পদের পরিমাণ ১১৮.৮ বিলিয়ন
| বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় ইলন মাস্ককে টপকে শীর্ষে উঠে এসেছেন ফরাসি ধনকুবের সিইও বার্নার্ড আর্নল্ট। |
জর্ডানে ড্রোন হামলায় ৩ মার্কিন সেনা নিহত, আহত ২৫ | জর্ডানে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় অন্তত তিনজন মার্কিন সেনা নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ২৫ জন।
রোববার বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে যে, জর্ডানের সিরিয়ার সীমান্তের কাছে থাকা মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে এই ড্রোন হামলা চালানো হয়।
এই হামলা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এখনো এ হামলা-সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তারপরও আমরা জানি, সিরিয়া ও ইরাকে কার্যক্রম পরিচালনাকারী ইরান-সমর্থিত মৌলবাদী জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো এ হামলা চালিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কোনো সন্দেহ নেই যে এ হামলার পেছনে যারা রয়েছে, তাদের সবাইকে আমরা সময়মতো আমাদের পছন্দমতো কায়দায় জবাবদিহির আওতায় আনব।
বার্তাসংস্থা এপির বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জর্ডানে প্রায় তিন হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর মার্কিন সেনাদের লক্ষ্য করে এটিই প্রথম হামলা।
গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর শুরু হওয়া সংঘাতে এই প্রথম মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলায় সেনাদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। এর আগেও মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন জায়গায় মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা হয়েছে।
| জর্ডানে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় অন্তত তিনজন মার্কিন সেনা নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ২৫ জন। |
ইসরায়েলের অভিযোগ ও ৯ দেশের তহবিল বন্ধ নিয়ে যা বলছে জাতিসংঘ | ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের ত্রাণ ও শরণার্থী সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে গত বছর ৭ অক্টোবর হামাসের অতর্কিত হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছে ইসরায়েল।
গত শুক্রবার জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত (আইসিজে) গাজায় হত্যা ও ধ্বংস বন্ধের জন্য ইসরায়েলকে সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। সেদিনই জাতিসংঘের সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে হামাসের সঙ্গে হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ তোলে ইসরায়েল।
এ অভিযোগ আমলে নিয়ে ইতোমধ্যেই কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে ইউনাইটেড নেশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি (ইউএনআরডব্লিউএ)। তবে ওই কর্মীদের নাম এখনো প্রকাশ্যে আনা হয়নি।
এদিকে ইসরায়েল অভিযোগ তোলার পর জাতিসংঘের সংস্থাটিকে নতুন করে তহবিল দেওয়া সাময়িকভাবে বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে নয় দেশ—যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, স্কটল্যান্ড, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও সুইজারল্যান্ড।
ইউএনআরডব্লিউএ'র বিরুদ্ধে অভিযোগ, ইসরায়েলের সঙ্গে জাতিসংঘের সম্পর্ক ও বিশ্বের অন্যান্য দেশের প্রতিক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত থাকছে এই লেখায়।
১৯৪৮ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য ইউনাইটেড নেশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রতিষ্ঠিত হয়।
সংস্থাটি ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু বলতে এমন ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে, যাদের ১ জুন ১৯৪৬ সাল থেকে ১৫ মে ১৯৪৮ সালের মধ্যে ফিলিস্তিনে বাসস্থান ছিল কিন্তু ১৯৪৮ সালে যুদ্ধের পর তারা বাসস্থান ও জীবিকা হারিয়েছে। এই সংজ্ঞা অনুযায়ী, প্রায় ৫ দশমিক ৯ মিলিয়ন মানুষকে উদ্বাস্তু ধরা হয়।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে (যেখানে সব রাষ্ট্রের ভোটপ্রদানের সক্ষমতা রয়েছে) নিয়মিতভাবে সংস্থাটির ম্যান্ডেট পুনর্নবীকরণ করা হয়। ইউএনআরডব্লিউএ চার প্রজন্মের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তা দিয়ে আসছে। তাদের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, সংস্থাটি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, ক্যাম্পের অবকাঠামো, সামাজিক পরিষেবা এবং জরুরি সহায়তা দিয়ে থাকে।
ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় কমপক্ষে ১৫২ ইউএনআরডব্লিউএ কর্মী নিহত হয়েছে বলে সংস্থাটি জানায়।
গত শুক্রবার এই সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের অতর্কিত হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ তোলে ইসরায়েল। এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, ইসরায়েল ১২ জন কর্মী সম্পর্কে ইউএনআরডব্লিউএ এবং যুক্তরাষ্ট্রকে তথ্য দিয়েছে, যারা ৭ অক্টোবরের হামলায় জড়িত ছিল।
গতকাল শনিবার ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, সংস্থাটির কর্মীরা জাতিসংঘের সুযোগ সুবিধাগুলো 'সন্ত্রাসবাদী উদ্দেশ্যে' ব্যবহার করেছে।
আইডিএফ এর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গোয়েন্দা বিভাগ এসব ঘটনা যাচাই করেছে। তারা ইউএনআরডব্লিউএ কর্মীদের "গণহত্যায়" জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রমের উদ্দেশ্যে ইউএনআরডব্লিউএ সুযোগ-সুবিধা ব্যবহারের প্রমাণ পেয়েছে।
তবে এ বিষয়ে তারা বিস্তারিত কিছু জানাননি। এক প্রশ্নের উত্তরে আইডিএফ কর্মকর্তা বলেন, 'এই পর্যায়ে আমাদের কাছে এর বেশি তথ্য নেই। ইন্টারনাল ওভারসাইট সার্ভিসেস অফিস (জাতিসংঘের অভ্যন্তরীণ তদারকি সংস্থা) এই অভিযোগ খতিয়ে দেখবে, যেমনটা ইউএনআরডব্লিউএ'র কমিশনার জেনারেল তাদের অনুরোধ করেছেন।'
অভিযোগ ওঠার পর ইউএনআরডব্লিউএ কমিশনার-জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি এক বিবৃতিতে জানান, তিনি কয়েকজন কর্মচারীর বিরুদ্ধে হামলায় জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছেন। তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল হয়েছে ও এসব ঘটনা খতিয়ে দেখতে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইউএনআরডব্লিউএ কর্মীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দিয়ে জবাবদিহি করা হবে বলে জানান তিনি। এ ঘটনায় বিভিন্ন দেশের অর্থায়ন বন্ধের ঘোষণাকে তিনি 'অদায়িত্বশীল' আচরণ বলে উল্লেখ করেছেন।
বর্তমানে গাজায় জাতিসংঘের প্রায় ১৩ হাজার কর্মী রয়েছে।
আজ রোববার এক বিবৃতিতে মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, যে ১২ কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাদের মধ্যে নয় জনকে বরখাস্ত করা হয়েছে, একজন মারা গেছেন এবং অন্য দুজনের পরিচয় এখনও যাচাই করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, 'সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত জাতিসংঘের যে কোনো কর্মীকে অপরাধমূলক বিচারিক প্রক্রিয়ায় জবাবদিহি করা হবে। এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে একটি স্বাধীন পর্যালোচনা করা হচ্ছে।'
সব দেশের প্রতি ইউএনআরডব্লিউএ-তে আর্থিক সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'জঘন্য কাজের জন্য এই কর্মীদের পরিণতি ভোগ করতে হবে। কিন্তু হাজার হাজার নারী ও পুরুষ যারা ইউএনআরডব্লিউএ-র জন্য কাজ করে, তার মধ্যে অনেক কর্মী বিপজ্জনক পরিস্থিতিতেও রয়েছেন, এই শাস্তি তাদের প্রাপ্য নয়।'
গত কয়েকমাসে জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গাজায় ইসরায়েলের সংঘাতপূর্ণ আচরণের কঠোর সমালোচনা করেছেন। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, ওই অঞ্চলের ২৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল।
বারবার জাতিসংঘে যুদ্ধবিরতির বিষয়েও আলোচনা উঠেছে।
গত শুক্রবার জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত ইসরায়েলকে গাজায় হত্যা ও ধ্বংস বন্ধের জন্য ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। হামাসের সঙ্গে যুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপকে 'গণহত্যা' বলে উল্লেখ করে দক্ষিণ আফ্রিকার করা একটি মামলার অংশ হিসেবে অন্তবর্তীকালীন এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
তবে আদালত গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকা এ ব্যাপারে অনুরোধ করেছিল।
এ আদেশের পর, সেইদিনই জাতিসংঘের সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে ইসরায়েল।
তবে এর আগে থেকেই, দীর্ঘদিন ধরে ইউএনআরডব্লিউএ'র বিরুদ্ধে একই ধরনের সমালোচনা করছে ইসরায়েল। জাতিসংঘের এই সংস্থাটি ইসরায়েল-বিরোধী উসকানি দেয় বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। ২০১৭ সালে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সংস্থাটি ভেঙে দেওয়ার কথাও বলেছিলেন। সেসময় তিনি বলেন, 'ইউএনআরডব্লিউএ'কে জাতিসংঘের প্রধান শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) সাথে একীভূত করা উচিত।'
তবে এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছে ইউএনআরডব্লিউএ।
ইউএনআরডব্লিউএ'তে সবচেয়ে বেশি অর্থায়ন দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েল সংস্থাটির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার পর এর নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (স্টেট ডিপার্টমেন্ট)। সংস্থাটিকে অস্থায়ীভাবে অতিরিক্ত তহবিল দেওয়া স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর পরপরই যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, স্কটল্যান্ড, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও সুইজারল্যান্ড একই ঘোষণা দেয়।
এর আগে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এই সংস্থায় অর্থায়ন পুরোপুরি বন্ধ করেছিল।
এদিকে এখনো পর্যন্ত ইউএনআরডব্লিউএ-র তহবিল বন্ধের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে ইউরোপের দুই দেশ— আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে।
এ বিষয়ে আইরিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন জানান, জাতিসংঘের পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করার সিদ্ধান্তের প্রতি তার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। অন্যদিকে নরওয়ে সরকার জানিয়েছে, তারা ইউএনআরডব্লিউএর জন্য আর্থিক সহায়তা বন্ধ করবে না তবে তারা জাতিসংঘের তদন্তের ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছে।
সংস্থায় তহবিল স্থগিত করার সিদ্ধান্তকে 'লজ্জাজনক' বলে উল্লেখ করেছেন ফিলিস্তিনি জাতীয় উদ্যোগের মহাসচিব মুস্তাফা বারগৌথি। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, আইসিজে'র রায়ের পরপরই এই ধরনের অভিযোগ তোলা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
অর্থায়ন বন্ধ করে দেওয়া দেশগুলোকে 'অবিলম্বে তাদের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার' আহ্বান জানিয়েছে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও)।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এই অর্থায়ন বন্ধের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। অন্যান্য দেশকেও তহবিল বন্ধের জন্য আহ্বান জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ।
| ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের ত্রাণ ও শরণার্থী সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে গত বছর ৭ অক্টোবর হামাসের অতর্কিত হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছে ইসরায়েল। |
হুতি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজের ১ বাংলাদেশিসহ ২৩ ক্রু উদ্ধারে ভারতীয় রণতরী | ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের এডেন উপসাগরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ব্রিটিশ তেলবাহী জাহাজ মার্লিন লুয়ান্ডায় আগুন লেগেছে। জাহাজটিতে ২২ ভারতীয় ও এক বাংলাদেশি ক্রু আছেন।
আগুন নেভাতে ও ক্রুদের উদ্ধারে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য জাহাজের কাছে পৌঁছেছে ভারতীয় নৌ-বাহিনীর একটি রণতরী।
ভারতের নৌ-বাহিনী জানিয়েছে, গাইডেড-মিসাইল ডেস্ট্রয়ার আইএনএস বিশাখাপত্তনম বাণিজ্যিক জাহাজটির আগুন নেভাতে কাজ করছে।
গত ২৬ জানুয়ারি মার্লিন লুয়ান্ডা জাহাজে হামলা হয়। এ ঘটনার পরপরই রণতরীটিকে পাঠানো হয়।
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর লোহিত সাগরে চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজে হুতিদের হামলার ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যেই এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হলো।
ভারতীয় নৌবাহিনী এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে জানিয়েছে, 'ক্ষতিগ্রস্ত বাণিজ্যিক জাহাজটির অগ্নিনির্বাপণে ক্রুদের সহায়তা করতে আইএনএস বিশাখাপত্তনম থেকে অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জামসহ এনবিসিডি (ন্যাশনাল বায়োলজিক্যাল অ্যান্ড কেমিক্যাল ডিফেন্স) টিম মোতায়েন করা হয়েছে। জাহাজে ২২ ভারতীয় এবং ১ জন বাংলাদেশি ক্রু আছেন।'
কীভাবে জাহাজটিতে আগুন লেগেছে, সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া গেলেও, হুতিদের ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে আগুন লেগেছে বলে জানা গেছে।
ভারতীয় নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, মার্লিন লুয়ান্ডা জাহাজের আগুনে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
| ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের এডেন উপসাগরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ব্রিটিশ তেলবাহী জাহাজ মার্লিন লুয়ান্ডায় আগুন লেগেছে। জাহাজটিতে ২২ ভারতীয় ও এক বাংলাদেশি ক্রু আছেন। |
ইসরায়েলকে গাজায় গণহত্যা ঠেকানোর নির্দেশ আইসিজের | ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা ঠেকাতে এবং বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের সহায়তা দিতে ইসরায়েলকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)।
আজ শুক্রবার নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে আইসিজে এ নির্দেশ দেয় বলে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
তবে গাজায় ইসরালের সামরিক অভিযান বন্ধের যে আদেশ দক্ষিণ আফ্রিকা চেয়েছিল তাতে সায় দেয়নি আইসিজে।
আজকের রায়ে বিচারকরা বলেছেন, ইসরায়েলকে অবশ্যই তার সেনাদের গণহত্যা থেকে বিরত রাখতে তার ক্ষমতার মধ্যে সব ব্যবস্থা নিতে হবে, শাস্তি দিতে হবে এবং মানবিক পরিস্থিতি উন্নয়নে ব্যবস্থা নিতে হবে।
চলতি মাসের শুরুতে আইসিজেতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। সেখানে দ্রুত ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বন্ধের আদেশ চাওয়া হয়, যে অভিযানে ২৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অভিযানে ইসরায়েল রাষ্ট্রীয়ভাবে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে বলে মামলায় অভিযোগ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
তবে ইসরায়েল গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার অভিযোগকে মিথ্যা অভিহিত করে দেশটি বলেছে, তারা বেসামরিক হতাহতের ঘটনা এড়াতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে।
| ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা ঠেকাতে এবং বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের সহায়তা দিতে ইসরায়েলকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। |
যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান কি সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার দ্বারপ্রান্তে? | ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধ এখন আর কেবল গাজার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ইতোমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে এর আঁচ। এতে আঞ্চলিক ও বিশ্ব শক্তিগুলোর মধ্যে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা তীব্র থেকে আরও তীব্রতর হচ্ছে।
সিএনএনের আজ বৃহস্পতিবারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এতকাল ধরে এই অঞ্চলে যে লড়াই চলছিল, এটি একদিকে মূলত ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়া এবং অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্রদের মধ্যেকার টিট-ফর-ট্যাট হামলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি হস্তক্ষেপ এই আশঙ্কা বাড়িয়ে দিচ্ছে যে, উভয়ের মধ্যে চলমান প্রক্সি লড়াই সরাসরি যুদ্ধে রূপ নিতে পারে।
এখন পর্যন্ত একে অপরের সম্মুখ লড়াই এড়াতে পেরেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান। যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে ইয়েমেন, সিরিয়া ও ইরাকে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর ওপর হামলা করছে। অপরদিকে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো ইরাক ও সিরিয়ায় মার্কিন নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করছে। তেহরানও ইরাক, সিরিয়া ও পাকিস্তানে ইরান-বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর ওপর হামলার কথা জানিয়েছে। যদিও ইরানের হামলার পাল্টা জবাব দিয়েছে পাকিস্তান।
গোটা মধ্যপ্রাচ্যকেই ইরান নিজের বাড়ির উঠান বলে মনে করে এবং এ অঞ্চলে মার্কিন বাহিনীর উপস্থিতির ঘোরবিরোধী। সিএনএনের প্রতিবেদনটির ভাষ্য, এই কারণেই গত কয়েক দশক ধরে তারা আঞ্চলিক ইসলামপন্থী, পশ্চিমা ও ইসরায়েল-বিরোধী মিলিশিয়াদের একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে অর্থ ব্যয়ের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে। বর্তমানে এর ফল পেতে শুরু করেছে ইরান। দেরিতে হলেও ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো যুদ্ধক্ষেত্রে নিজেদের পারঙ্গমতা জানান দিতে সক্ষম হচ্ছে।
বিশেষ করে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা, যারা একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক জলপথ লোহিত সাগরে মূর্তিমান আতঙ্ক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এতে বিশ্ব বাণিজ্য সরবরাহ ব্যবস্থা বেশ বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে। ফলশ্রুতিতে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোকে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে বাধ্য করেছে। হুতিরা এখানেই থেমে নেই, হামাসের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি তাদের অর্থায়নও করছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযানের অভিজ্ঞতা ততটা সুখকর না হওয়ায়, বছরের পর বছর ধরে এ অঞ্চল থেকে দূরে সরে যাওয়ার চেষ্টা করলেও ভাগ্য ফের তাদের মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে ফিরিয়ে এনেছে। যদিও ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর আগ থেকেই ৩০ হাজারের বেশি সেনাসহ এ অঞ্চলে তাদের একটি শক্তিশালী সামরিক অবস্থান ছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের সামরিক অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন করে প্রায় এক হাজার ২০০ সেনার পাশাপাশি নেভি ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপের হাজারো সেনা ও মোটামুটি দুই হাজার জনবল সম্বলিত একটি মেরিন এক্সপিডিশনারি ইউনিট মোতায়েন করেছে।
তাছাড়া, ইরাক ও সিরিয়াসহ কিছু জায়গায় মার্কিন সামরিক উপস্থিতি ইরান ও তার মিত্রদের চেয়েও বেশি।
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পিছিয়ে নেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান। ইতোমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক অঞ্চলে নিজেদের বা মিত্রদের অবস্থান লক্ষ্য করে পাল্টাপাল্টি সামরিক অভিযান পরিচালনা করেছে তারা।
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি উত্তর কোরিয়া ও তাইওয়ানের প্রতি চীনের রক্তচক্ষু তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের বার্তা-বাতাস দিচ্ছে। এই বাতাসে মাতোয়ারা হয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান প্রক্সি প্রক্সি খেলার খোলস ছেড়ে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে কি না, তা সময়ই বলে দেবে।
| ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধ এখন আর কেবল গাজার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ইতোমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে এর আঁচ। এতে আঞ্চলিক ও বিশ্ব শক্তিগুলোর মধ্যে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা তীব্র থেকে আরও তীব্রতর হচ্ছে। |
ইউক্রেনের বন্দিসহ রুশ সামরিক বিমান বিধ্বস্ত, ৭৪ যাত্রীর সবাই নিহত | রাশিয়ার বেলগোরোড অঞ্চলে রুশ ইলিউশিন ইল-৭৬ নামের একটি সামরিক পরিবহন উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে।
বেলগোরোদের আঞ্চলিক গভর্নর ভায়াচেসলাভ গ্লাদকোভ জানিয়েছেন, ওই উড়োজাহাজে থাকা ইউক্রেনের ৬৫ জন যুদ্ধবন্দীসহ মোট ৭৪ জন ছিল। তারা সবাই নিহত হয়েছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, বিমানটিতে ৬৫ জন যুদ্ধ অপরাধী, ছয়জন ক্রু সদস্য এবং তিনজন আরোহী ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে ইয়াবলোনোভো গ্রামে একটি উড়োজাহাজ খাড়াভাবে আছড়ে পড়ছে। উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে একটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
| রাশিয়ার বেলগোরোড অঞ্চলে রুশ ইলিউশিন ইল-৭৬ নামের একটি সামরিক পরিবহন উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে। |
শোয়ার্জেনেগারের সেই ঘড়ি নিলামে, দাম উঠেছে ২ লাখ ৯৪ হাজার ডলার | ঘোষণা না দিয়ে দামি সুইস হাতঘড়ি নিয়ে আসার অভিযোগে হলিউড তারকা আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগারকে সম্প্রতি মিউনিখের বিমানবন্দরে আটক করা হয়। সেই ঘড়ি এবার অস্ট্রিয়ায় আয়োজিত নিলামে ২ লাখ ৯৪ হাজার ডলারে (দুই লাখ ৭০ হাজার ইউরো) বিক্রি হয়েছে।
আজ রোববার এই তথ্য জানিয়েছে সিএনএন। শোয়ার্জেনেগার ক্লাইমেট ইনিশিয়েটিভ নামে জলবায়ু সংক্রান্ত দাতব্য সংস্থার উদ্যোগে এই নৈশভোজ ও নিলামের আয়োজন করা হয়।
শোয়ার্জেনেগার নিজেই দাতব্য সংস্থাটি পরিচালনা করেন। এই নৈশভোজ ও নিলাম থেকে মোট ১৩ লাখ ১০ হাজার ইউরো সংগৃহীত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের জলবায়ু বিষয়ক প্রতিনিধি জন কেরি ও অন্যান্য জলবায়ু উদ্যোগ সংশ্লিষ্টরা এতে অংশ নেন।
নৈশভোজে শোয়ার্জেনেগার বলেন, 'দূষণের বিরুদ্ধে অব্যাহত সংগ্রামে আমি কিছু সাফল্য অর্জিত হতে দেখেছি। আমরা অনেকদূর এসেছি। আজ, এই সমস্যার সমাধানে অবদান রাখতে অনেকেই এখানে উপস্থিত হয়েছেন। যারা আমার সঙ্গে দূষণের বিরুদ্ধে সংগ্রামে যোগ দিয়েছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।'
গত বুধবার লস অ্যাঞ্জেলস থেকে অস্ট্রিয়া যাওয়ার পথে মিউনিখ বিমানবন্দরে অবতরণ করেন শোয়ার্জেনেগার।
সেখানে বিলাসবহুল অদেমাখ পিগে ব্র্যান্ডের ঘড়িটির বিষয়ে শুল্ক বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে ঘোষণা না দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে কর ফাঁকি দেওয়ার ফৌজদারি অপরাধে মামলা করা হবে বলে জানান মিউনিখের শুল্ক বিভাগের প্রেস কর্মকর্তা টমাস মেইস্টার।
'তিনি তার সঙ্গে থাকা একটি পণ্যের বিষয়ে ঘোষণা দেননি। এই পণ্যটি (ইউরোপে ব্যবহারের জন্য) ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। এবং এই (কর) প্রক্রিয়া সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য', যোগ করেন তিনি।
মেইস্টার আরও জানান, ক্যালিফোর্নিয়ার সাবেক গভর্নর শোয়ার্জেনেগারকে প্রায় তিন ঘণ্টা আটক রাখা হয়। এরপর তাকে মুক্তি দেওয়া হলে তিনি তার গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হন।
শোয়ার্জেনেগার ঘড়ির জন্য উপযুক্ত কর দিতে রাজি হন। কিন্তু কর্মকর্তারা এক ঘণ্টা চেষ্টা করেও ক্রেডিট কার্ড মেশিনের মাধ্যমে কর আদায় করতে পারেনি। এরপর তারা শোয়ার্জেনেগারকে একটি ব্যাংকে নিয়ে যান। সেখানে তাকে এটিএম থেকে স্থানীয় মুদ্রা তুলে কর পরিশোধ করতে বলেন কর্মকর্তা।
কিন্তু ব্যাংকটি ততক্ষণে বন্ধ হয়ে গেছে এবং সেই এটিএমের অর্থ উত্তোলনের সর্বোচ্চ সীমা কর পরিশোধের জন্য যথেষ্ট ছিল না।
পরবর্তীতে তিনি বিমানবন্দরে ফিরে আসার পর নতুন শিফটের এক কর্মকর্তা নতুন একটি ক্রেডিট কার্ড মেশিন নিয়ে আসেন। এই মেশিনটি ঠিকমত কাজ করার পর ছাড়া পান আর্নল্ড।
| ঘোষণা না দিয়ে দামি সুইস হাতঘড়ি নিয়ে আসার অভিযোগে হলিউড তারকা আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগারকে সম্প্রতি মিউনিখের বিমানবন্দরে আটক করা হয়। সেই ঘড়ি এবার অস্ট্রিয়ায় আয়োজিত নিলামে ২ লাখ ৯৪ হাজার ডলারে (দুই লাখ ৭০ হাজার ইউরো) বিক্রি হয়েছে। |
ভারত থেকে মস্কোগামী উড়োজাহাজ আফগানিস্তানে বিধ্বস্ত: তাস | ভারত থেকে মস্কোগামী একটি উড়োজাহাজ আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকায় বিধ্বস্ত হয়েছে।
আজ রোববার আমাজ সংবাদ সংস্থার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম তাস।
আমাজ'র প্রতিবেদনে বলা হয়, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ভারতীয় মালিকানাধীন উড়োজাহাজটি আফগানিস্তানের বাদাখশান প্রদেশে বিধ্বস্ত হয়েছে।
তবে উড়োজাহাজের মডেল ও এতে কতজন যাত্রী ছিল তা জানাতে পারেনি সংস্থাটি।
বাদাখশান প্রদেশে তালেবানের এক প্রতিনিধি খামা সংবাদ সংস্থাকে জানান, ঘটনাটি তদন্তের জন্য একটি দলকে ওই অঞ্চলে পাঠানো হয়েছে।
রয়টার্স বলছে, রাশিয়ায় নিবন্ধিত উড়োজাহাজটি ৬ জন যাত্রী নিয়ে উড্ডয়নের পর গতরাতে এর সঙ্গে রাডারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বলে আজ জানিয়েছে রাশিয়ান বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।
এর আগে, উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানায় আফগানিস্তানের পুলিশ।
রাশিয়ান বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, ১৯৭৮ সালে ফ্রান্সের তৈরি চার্টার অ্যাম্বুলেন্স উড়োজাহাজটি ভারত থেকে উজবেকিস্তান হয়ে মস্কোর দিকে যাচ্ছিল।
| ভারত থেকে মস্কোগামী একটি উড়োজাহাজ আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকায় বিধ্বস্ত হয়েছে। |
সিরিয়ায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইরানের ৪ সামরিক উপদেষ্টা নিহত | সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) ৪ সামরিক উপদেষ্টা নিহত হয়েছেন।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সানার বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, আজ শনিবার মাজেহ এলাকার এক আবাসিক ভবন লক্ষ্য করে এ হামলা চালায় ইসরায়েল।
এক সূত্র আল জাজিরাকে জানায়, আইআরজিসি'র গোয়েন্দা ইউনিটকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়। সেসময় সিরিয়ায় আইআরজিসি'র জ্যেষ্ঠ গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও তার সহকারীরা ভবনটিতে অবস্থান করছিলেন।
আইআরজিসি এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানায়, ইসরায়েলের বিমান হামলায় সিরিয়ান বাহিনীর কয়েকজন সদস্যসহ আইআরজিসি'র ৪ সামরিক উপদেষ্টা নিহত হয়েছেন।
নিহত সামরিক উপদেষ্টারা হলেন, হোজ্জাতোল্লাহ ওমিদভার, আলি আগাজাদেহ, হোসেইন মোহাম্মদী এবং সাইদ করিমি।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন একে ইসরায়েলের 'সন্ত্রাসী' হামলা হিসেবে অভিহিত করেছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েল।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, অন্তত ৪টি ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে চারতলা একটি ভবন সম্পূর্ণরূপে গুঁড়িয়ে গেছে। এ ঘটনায় আহত অন্তত একজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
| সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) ৪ সামরিক উপদেষ্টা নিহত হয়েছেন। |
ধনী-দরিদ্রের বৈষম্যের মধ্যেই প্রথম ট্রিলিয়নিয়ার পেতে যাচ্ছে বিশ্ব | বিশ্ব থেকে দারিদ্র্যের অভিশাপ মুছে ফেলতে আরও ২০০ বছরেরও বেশি সময় লাগতে পারে। তবে ধনীরা অতি দ্রুতই আরও বেশি ধনী হচ্ছে।
ব্রিটিশ দারিদ্র-দূরীকরণ ও দাতব্য সংস্থা অক্সফামের নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ১০ বছরের মধ্যে বিশ্ব প্রথম ট্রিলিয়নিয়ারের (১ লাখ কোটি ডলারের মালিক) দেখা পেতে পারে।
গত ১৫ জানুয়ারি সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত অভিজাত রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক নেতাদের এক সম্মেলনে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে অক্সফাম।
১৯১৬ সালে বিশ্ব প্রথম বিলিয়নিয়ারের (১০০ কোটি ডলারের মালিক) দেখা পেয়েছিল। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা অভাবনীয়ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, একইসঙ্গে ধনী ও গরীবের মধ্যে সম্পদ বৈষম্যের করুণ চিত্র নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে। অনেকে বলেন, ভালো বিলিয়নিয়ার বলতে কিছু নেই।
কিন্তু অতি ধনীদের প্রতি ক্রমবর্ধমান সমালোচনা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধনী ও গরীবের মধ্যে ব্যবধান আরও বেড়েছে। অক্সফাম বলছে, করোনা মহামারির পর থেকে এই বৈষম্য আরও তীব্র হয়েছে। করোনা মহামারি বৈশ্বিক অর্থনীতির মারাত্মক ক্ষতিসাধন করেছে এবং এর প্রভাবে চাকরির বাজারেও ধস নেমেছে।
'ইন-ইকুয়ালিটি ইনক' শিরোনামে অক্সফামের এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫০০ কোটি মানুষ আরও গরিব হয়ে পড়েছে। অথচ একই সময়ে বিশ্বের শীর্ষ পাঁচজন ধনী ব্যক্তির সম্পদ দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
সাধারণ মানুষ এবং অতি-ধনীদের মধ্যে সম্পদ বৈষম্য কমাতে অক্সফাম 'জনগণের কর্মকাণ্ডের একটি নতুন যুগের' আহ্বান জানিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে একচেটিয়া ব্যবসা বন্ধ করা, কর সংস্কার এবং করপোরেট আধিপত্যের বিরুদ্ধে সরকারি খাতকে শক্তিশালী করা।
অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাহী পরিচালক অমিতাভ বেহার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, 'আমরা একটি বিভক্তির দশকের শুরু দেখছি, যেখানে বিপুল সংখ্যক মানুষ মহামারি, মুদ্রাস্ফীতি এবং যুদ্ধের অর্থনৈতিক ধাক্কা মোকাবিলা করছে। অন্যদিকে বিলিয়নিয়ারদের সম্পদও ফুলে ফেঁপে উঠছে। আমাদের অর্থনীতি এবং জীবনের ওপর কোনো করপোরেশন বা ব্যক্তির এতটা ক্ষমতা থাকা উচিত নয়।'
সূত্র: টাইম ডট কম
গ্রন্থনা: আহমেদ হিমেল
| বিশ্ব থেকে দারিদ্র্যের অভিশাপ মুছে ফেলতে আরও ২০০ বছরেরও বেশি সময় লাগতে পারে। তবে ধনীরা অতি দ্রুতই আরও বেশি ধনী হচ্ছে। |
ইরান-পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি হামলার সম্ভাব্য অভিঘাত | আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাকিস্তানে ইরানের বিমান হামলা চালানো নিয়ে উত্তেজনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই গতকাল বৃহস্পতিবার ইরানে 'প্রতিশোধমূলক' পাল্টা হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান।
ইরানের সিস্তান ও বেলুচিস্তান প্রদেশে 'সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আস্তানা' লক্ষ্য করে চালানো এ ক্ষেপনাস্ত্র হামলায় চার শিশুসহ অন্তত নয়জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে মঙ্গলবার পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের পঞ্জগুর শহরে ইরানি হামলায় দুই শিশু নিহত হওয়ার পাশাপাশি আরও তিনজন আহত হওয়ার কথা জানায় ইসলামাবাদ।
গাজায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যুদ্ধের সময়ে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার সময়ে ইরান ও পাকিস্তান পরস্পরের ভূ-খণ্ডে এই হামলা চালালো।
বিষয়টি নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার কথা বলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান ও অধ্যাপক আমেনা মহসিনের সঙ্গে। তাদের কাছে প্রশ্ন ছিল—দুই দেশের পাল্টাপাল্টি এ হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে চলমান আঞ্চলিক সংঘাত আরও বিস্তৃত হওয়ার প্রেক্ষাপট তৈরি হলো কি না? আর এই সংঘাত দীর্ঘমেয়াদে চলতে থাকলে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে এর কেমন প্রভাব পড়তে পারে?
অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান মনে করেন, পাল্টাপাল্টি এ হামলায় নিশ্চিতভাবেই মধ্যপ্রাচ্যে চলমান আঞ্চলিক সংঘাত আরও বিস্তৃত হওয়ার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়ে গেছে। তিনি বলেন, 'বিশেষ করে হুতি, হিজবুল্লাহ ও হামাসের তৎপরতার মধ্যে এখন এই বেলুচিস্তান ঘিরে যে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে, তা শেষ পর্যন্ত একটা বড় ধরনের রিজিওনাল ওয়ারফেয়ারের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
'কারণ ওখানে যে অ্যালায়েন্স ও কাউন্টার অ্যালায়েন্সগুলো বিরাজ করছে, তাতে এক পক্ষের আরেক পক্ষের বিপক্ষে শক্তি প্রদর্শন করার বিষয়টি জরুরি। বিশেষ করে প্যালেস্টাইন ইস্যুটা যেখানে এর কেন্দ্রে আছে। সুতরাং এটা এখন কেবল ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতে আটকে নেই, এটা বড় ধরনের একটা সংঘাতের দিকে নিয়ে যেতে পারে।'
মঙ্গলবারের হামলার ব্যাপারে ইরান দাবি করেছিল, তারা পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ আল-আদলের দুটি ঘাঁটিকে লক্ষ্যস্থল করেছে।
কিন্তু পাকিস্তান তা প্রত্যাখ্যান করে এটিকে 'আকাশসীমা লঙ্ঘন' ও 'অবৈধ কাজ' বলে অভিহিত করে। সেইসঙ্গে এ ধরনের পদক্ষেপ 'গুরুতর পরিণতি ডেকে আনতে পারে' বলেও ইরানকে সতর্ক করে ইসলামাবাদ।
এর পরিপ্রেক্ষিতে তেহরানের বক্তব্য ছিল, বৃহত্তর কোনো সংঘাতে তারা জড়াতে চায় না।
কিন্তু তেহরানের কথিত 'অ্যাক্সিস অব রেসিসট্যান্স' গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত ইয়েমেনে হুতি, লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং সিরিয়া ও ইরাকের বিভিন্ন গ্রুপ ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েল ও তার মিত্রদের ওপর হামলা চালিয়ে আসছে।
সুতরাং ইরান-পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি এই হামলাকে খুব সাদা চোখে দেখতে রাজি নান অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান। তার ভাষ্য, 'ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে ইসরায়েলের পক্ষ নিয়েছে, এর বিপরীতে চীন-রাশিয়া আবার তাদের বিপরীতে অবস্থান নিচ্ছে। তাতে এক ধরনের রিজিওনাল প্রক্সি ওয়ারও কিন্তু হতে পারে। এদের প্যাট্রোনাইজেসনেই আঞ্চলিক সংঘাতটা আরও বিস্তৃত হতে পারে।'
এ ছাড়া ইরান-পাকিস্তানের এই সংঘাত দীর্ঘমেয়াদে গড়ালে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও তার একটা প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন এই অধ্যাপক। বলেন, 'এর অর্থনৈতিক প্রভাবটা অনেক বেশি পড়বে। বিশেষ করে আমাদের প্রবাসী কর্মী যারা আছেন, তাদের কাজের ক্ষেত্রটা বিঘ্নিত হবে। নতুন করে মানুষ যাওয়ার প্রক্রিয়াটাও বিঘ্নিত হবে। এরসঙ্গে আমাদের জ্বালানি সংকট তো এখন এমনিতেই আছে, জ্বালানি তেলের দাম আবারও বাড়তে পারে—সবকিছু মিলিয়ে একটা নতুন জটিলতা তৈরি হতে পারে।'
এর পাশাপাশি বাংলাদেশের উগ্রপন্থী ইসলামিক দলগুলো এ ঘটনায় উৎসাহিত হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান। বলেন, 'আমাদের যে ইসলামিক উগ্রপন্থী গ্রুপগুলো আছে তারাও এগুলো থেকে উৎসাহিত হতে পারে। এতে নতুন করে কোনো দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে পারি। দক্ষিণ এশিয়াজুড়েই এই প্রবণতাটা দেখা দিতে পারে। যদি সংঘাতটা দীর্ঘমেয়াদে চলতে থাকে। কারণ এই গোষ্ঠীগুলো কারও না কারও দ্বারা প্যাট্রোনাইজড। যার ফলে তাদের জন্যও একটা ক্ষেত্র তৈরি হবে সংঘাতে জড়ানোর।'
ইরান-পাকিস্তান উভয়েই একে অপরের বিরুদ্ধে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ এনেছে বিভিন্ন সময়; যারা বছরের পর বছর ধরে তাদের সীমান্ত এলাকায় হামলা চালিয়ে আসছে।
এই দুই দেশের সীমান্ত এলাকার বিস্তৃতি প্রায় ৯০০ কিলোমিটার। তাই এর দুই পাড়ের নিরাপত্তার বিষয়টি দুই দেশের জন্যই দীর্ঘকাল ধরে উদ্বেগের বিষয় হয়ে আছে।
ফলে চলমান এ উত্তেজনা দীর্ঘ সংঘাতের দিকে মোড় নেবে কি না, এমন আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে অধ্যাপক আমেনা মহসিনের অভিমত, 'এটা অবশ্যই পুরো অঞ্চলের অস্থিরতাটা আরও বাড়িয়ে দেবে। কারণ ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যে যে এক ধরনের টানাপোড়েন আছে, সেটা আমরা জানি।
'মধ্যপ্রাচ্যে হুতিদের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের একটা রিজার্ভেশন আছে। বিপরীতে হুতিদের প্রতি ইরানের একটা সমর্থন আছে। তাতে ইরান-পাকিস্তানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় নতুন একটা কনফিগারেশন, ডাইনামিক্সের ব্যালেন্স তৈরি হতে পারে।'
এ ছাড়া এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে যে সংঘাতগুলো চলছে, তা পুরো পৃথিবীতেই একটি অর্থনৈতিক সংকট তৈরি করছে মন্তব্য করে আমেনা মহসিন আরও বলেন, 'এর একটা প্রভাব বাংলাদেশেও আছে। মধ্যপ্রাচ্যে যে সংঘাত চলছে, সেটাও আমাদের ওপর এক ধরনের প্রভাব ফেলছে। এখানে সেটা একটা পলিটিক্যাল ইস্যু হিসেবেও দাঁড়াচ্ছে। এটা ভালো কোনো লক্ষণ না। বিশ্বরাজনীতির জন্যও ভালো কোনো সংকেত না।'
| আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাকিস্তানে ইরানের বিমান হামলা চালানো নিয়ে উত্তেজনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই গতকাল বৃহস্পতিবার ইরানে 'প্রতিশোধমূলক' পাল্টা হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। |
গুজরাটে পিকনিকের নৌকা ডুবে শিক্ষার্থী-শিক্ষকসহ ১৬ জনের মৃত্যু | ভারতের গুজরাটের ভদোদরা জেলার একটি লেকে পিকনিকের নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে।
এতে ১৪ স্কুলশিক্ষার্থী ও ২ শিক্ষকসহ অন্তত ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভদোদরার হারনি মোতনাথ লেকে এ ঘটনা ঘটে।
জেলা কালেক্টর এ বি গোর জানান, নৌকায় মোট ২৭ জন স্কুলশিক্ষার্থী ছিল। নিখোঁজদের সন্ধানে অভিযান চলছে।
গুজরাটের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রুশিকেশ প্যাটেল সাংবাদিকদের বলেন, নৌকাডুবির ঘটনায় ১০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
জেলা কালেক্টর জানান, একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিকেলে লেকের কাছে পিকনিক করতে গিয়ে একটি নৌকায় ওঠে।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
ভদোদরা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার পান্না মোমায়া জানান, সরকারি-বেসরকারি অংশিদারত্বের ভিত্তিতে পরিচালিত লেকটির জোন ম্যানেজারসহ অন্তত দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
| ভারতের গুজরাটের ভদোদরা জেলার একটি লেকে পিকনিকের নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। |
মিউনিখ বিমানবন্দরে আটক আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার | ঘোষণা না দিয়ে দামি হাতঘড়ি আনায় জার্মানির মিউনিখ বিমানবন্দরে আটক হয়েছেন হলিউডের প্রখ্যাত অভিনেতা আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার। প্রায় তিন ঘণ্টা আটক থাকার পর তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
গতকাল বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে সিএনএন।
মিউনিখের শুল্ক বিভাগের প্রেস কর্মকর্তা টমাস মেইস্টার সিএনএনকে জানান, জার্মানিতে অবতরণের পর কর ফাঁকি দেওয়ার ফৌজদারি অপরাধের জন্য শোয়ার্জেনেগারের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
'তিনি তার সঙ্গে থাকা একটি পণ্যের বিষয়ে ঘোষণা দেননি। এই পণ্যটি (ইউরোপে ব্যবহারের জন্য) ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। এবং এই (কর) প্রক্রিয়া সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য', যোগ করেন তিনি।
মেইস্টার আরও জানান, ক্যালিফোর্নিয়ার সাবেক গভর্নর শোয়ার্জেনেগারকে প্রায় তিন ঘণ্টা আটক রাখা হয়। এরপর তাকে মুক্তি দেওয়া হলে তিনি তার গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হন।
সিএনএন এক শোয়ার্জেনেগারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, সুইস বিলাসবহুল অদেমাখ পিগে ব্র্যান্ডের এই ঘড়ির মালিক আর্নল্ড নিজেই। তিনি খুব সম্ভবত আজ বৃহস্পতিবার অস্ট্রিয়ার কিৎজবুহেলে বিক্রির জন্য এটাকে নিলামে তুলবেন।
সূত্রটি বিমানবন্দরে শোয়ার্জেনেগারের তিক্ত অভিজ্ঞতার পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা দেন। তার মতে, এই পুরো ঘটনাটি শুল্ক কর্মকর্তাদের অদক্ষতার চূড়ান্ত নিদর্শন এবং তারা অসংখ্য হাস্যকর ভুল করেন।
'আর্নল্ডকে কোনো ঘোষণা ফর্ম পূরণ করতে বলা হয়নি এবং তিনি শুল্ক কর্মকর্তাদের প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক জবাব দিয়েছেন', যোগ করেন তিনি।
শোয়ার্জেনেগার ঘড়ির জন্য উপযুক্ত কর দিতে রাজি হন। কিন্তু কর্মকর্তারা এক ঘণ্টা চেষ্টা করেও ক্রেডিট কার্ড মেশিনের মাধ্যমে কর আদায় করতে পারেনি। এরপর তারা শোয়ার্জেনেগারকে একটি ব্যাংকে নিয়ে যান। সেখানে তাকে এটিএম থেকে স্থানীয় মুদ্রা তুলে কর পরিশোধ করতে বলেন কর্মকর্তা।
কিন্তু ব্যাংকটি ততক্ষণে বন্ধ হয়ে গেছে এবং সেই এটিএমের অর্থ উত্তোলনের সর্বোচ্চ সীমা কর পরিশোধের জন্য যথেষ্ট ছিল না।
পরবর্তীতে তিনি বিমানবন্দরে ফিরে আসার পর নতুন শিফটের এক কর্মকর্তা নতুন একটি ক্রেডিট কার্ড মেশিন নিয়ে আসেন। এই মেশিনটি ঠিকমত কাজ করার পর ছাড়া পান আর্নল্ড।
| ঘোষণা না দিয়ে দামি হাতঘড়ি আনায় জার্মানির মিউনিখ বিমানবন্দরে আটক হয়েছেন হলিউডের প্রখ্যাত অভিনেতা আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার। প্রায় তিন ঘণ্টা আটক থাকার পর তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। |
মাঝ আকাশে কেবিন ক্রুকে মদ্যপ যাত্রীর কামড়, উড়োজাহাজের জরুরি অবতরণ | মধ্য আকাশে মদ্যপ এক যাত্রী কেবিন ক্রুর হাতে কামড় বসিয়ে দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রগামী জাপানের একটি উড়োজাহাজ টোকিওতে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছে।
আজ বুধবার এএফপির বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অল নিপ্পন এয়ারওয়েজের (এএনএ) এক মুখপাত্র এএফপিকে জানান, ৫৫ বছর বয়সী মার্কিন ওই যাত্রী যখন কেবিন ক্রুর হাতে কামড় বসিয়ে দেন, তখন তিনি 'প্রচণ্ড মাতাল' ছিলেন।
তবে জাপানি গণমাধ্যমের কাছে অভিযুক্ত যাত্রী বলেছেন যে, তিনি ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন এবং সেসময় কী ঘটেছে তা তার মনে নেই।
প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় উড়োজাহাজটিতে ১৫৯ জন যাত্রী ছিল। কামড় কাণ্ডের সঙ্গে সঙ্গেই যাত্রীরা ভীত হয়ে পাইলটকে টোকিওর হানেদা বিমানবন্দরে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেন।
পরে উড়োজাহাজটি জরুরি অবতরণের পর সেই যাত্রীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে এএনএ কর্তৃপক্ষ।
| মধ্য আকাশে মদ্যপ এক যাত্রী কেবিন ক্রুর হাতে কামড় বসিয়ে দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রগামী জাপানের একটি উড়োজাহাজ টোকিওতে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছে। |
আইওয়া ককাসে ৫১ শতাংশ ভোট পেয়ে ট্রাম্পের জয় | দ্বিতীয়বারের মতো আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে প্রথম 'বাধা' পেরোতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী বাছাইয়ে আইওয়া অঙ্গরাজ্যের দলীয় ককাসে বড় জয় পেয়েছেন ট্রাম্প।
সোমবার মধ্য-পশ্চিম আমেরিকার আইওয়া অঙ্গরাজ্যের 'রিপাবলিকান ককাস' এ প্রাথমিক (প্রাইমারি) নির্বাচনে তিন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী মধ্যে এই ভোট হয়। এতে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি (৫১) ও ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিসকে (৪৫) বড় ব্যবধানে পরাজিত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প (৭৭)।
এডিসন রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী, ৯৫ শতাংশ ভোটের মধ্যে ট্রাম্প ৫১ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। রন ডিস্যান্টিস পেয়েছেন ২১ শতাংশ ও নিকি হ্যালি পেয়েছেন ১৯ শতাংশ।
এদিকে, গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিবেক রামস্বামীর নাম সামনে আসলেও আইওয়া ককাসে ট্রাম্পের এগিয়ে থাকার ইঙ্গিত মিলতেই এ লড়াই থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন তিনি। ট্রাম্পকে সুবিধা করে দিতেই রামস্বামীর এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।
রয়টার্স জানায়, আইওয়া ককাসের ফলাফল প্রমাণ করছে যে ক্রমবর্ধমান আইনি ঝামেলা, এমনকি দু'বার অভিশংসনের পরেও রিপাবলিকানদের মধ্যে আধিপত্য ধরে রেখেছেন ট্রাম্প।
তার বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি মার্কিন ক্যাপিটলে হামলা, ২০২০ সালের নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা, হোয়াইট হাউস ছেড়ে যাওয়ার পরেও গোপন নথি নিজের কাছে রেখে দেওয়া এবং পর্ন তারকার মুখ বন্ধ রাখতে অর্থ প্রদানসহ ৯১টি ফৌজদারি অভিযোগ রয়েছে।
তবে রিপাবলিকানদের অনেকেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলাগুলোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে দেখছেন।
রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হয়ে ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হন ট্রাম্প। ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও তিনি রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির জো বাইডেনের কাছে হেরে যান ট্রাম্প।
নির্বাচনে ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছিলেন ট্রাম্প। এখন তিনি ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন পাওয়ার জন্য লড়ছেন।
আইওয়া ককাসে বিজয়ের পর ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, 'ধন্যবাদ আইওয়া, আমি আপনাদের সবাইকে ভালবাসি!!!'
| দ্বিতীয়বারের মতো আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে প্রথম 'বাধা' পেরোতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। |
তাইওয়ানে স্বাধীনতাপন্থি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত, অস্বস্তিতে চীন | স্বশাসিত দ্বীপরাষ্ট্র তাইওয়ানে স্বাধীনতাপন্থি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছে চীন। তাইওয়ানের এই নির্বাচনকে 'যুদ্ধ অথবা শান্তি' বেছে নেওয়ার পথ বলে জানিয়েছিল এশিয়ার একমাত্র পরাশক্তিধর দেশটি।
গতকাল শনিবার আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, দ্বীপবাসীরা স্বাধীনতাপন্থি প্রার্থী লাই চিং-তেকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করায় চীন থেকে তাইওয়ানের আরও বহু দূর সরে যাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
চীনের কমিউনিস্ট সরকার তাইওয়ানের লাই চিং-তেকে স্বাধীনতাপন্থি হিসেবে গণ্য করে। তার ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি (ডিপিপি) গত আট বছর ধরে তাইওয়ান শাসন করছে।
তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হওয়ার পর লাই সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'দেশ সঠিক পথেই এগিয়ে যাবে। আমরা পিছনে ফিরে তাকাবো না।'
পরবর্তীতে তিনি তার ১০ হাজার উল্লসিত সমর্থকদের সমাবেশে বলেন, তার এই বিজয় গণতন্ত্রের বিজয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, তাইওয়ানের নির্বাচনের ফলাফল চীনকে এতটাই অস্বস্তিতে ফেলেছে যে ফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে বেইজিং বার্তা দিয়ে বলে—'তাইওয়ান চীনের অংশ'।
চীন শান্তিপূর্ণ উপায়ে তাইওয়ানকে নিজ দেশের অংশ করতে চায় তবে এ বিষয়ে শক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনা নাকচ করে দেয়নি।
গত কয়েকমাস ধরে চীন নিয়মিতভাবে তাইওয়ানের আশেপাশে সামরিক মহড়ার আয়োজন করে আসছে, যা সম্ভাব্য সংঘাতের আশঙ্কা জিইয়ে রেখেছে।
| স্বশাসিত দ্বীপরাষ্ট্র তাইওয়ানে স্বাধীনতাপন্থি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছে চীন। তাইওয়ানের এই নির্বাচনকে 'যুদ্ধ অথবা শান্তি' বেছে নেওয়ার পথ বলে জানিয়েছিল এশিয়ার একমাত্র পরাশক্তিধর দেশটি। |
হুতিদের বিমান ঘাঁটিতে কেন আবারও যুক্তরাষ্ট্রের হামলা | শনিবার সকালে ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের লক্ষ্যবস্তুতে নতুন করে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান-সমর্থিত হুতি যোদ্ধারা লোহিত সাগরে জাহাজে আরও হামলার সতর্কতার পর এ হামলা চালানো হয়েছে বলে জানায় মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ড।
তবে হামলাটি কোথায় হয়েছে সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট কিছু জানায়নি যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবারের হামলার 'ফলো-আপ' হিসেবে 'একটি রাডার স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
ইয়েমেনের গণমাধ্যম বলছে, ইয়েমেনের রাজধানী সানার একটি বিমান ঘাঁটির কাছে এ হামলা চালানো হয়। হামলায় হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়েও এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি।
গত বৃহস্পতিবার থেকে অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, কানাডা ও নেদারল্যান্ডসের সহযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ব্যবহৃত এলাকাগুলোয় হামলা শুরু করেছে। হামলা চালানো হয়েছে রাজধানী সানায়। এ ছাড়া উপকূলীয় হোদেইদাহ শহরেও বিমান হামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামলার পর হুতি নেতারা এর প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দেন। প্রতিক্রিয়ায় গতকাল শুক্রবার এ বিষয়ে সর্তক করে বিবৃতি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'হুতিদের এই আচরণের প্রতিক্রিয়া জানানোর বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করব, যদি তারা এই আপত্তিকর আচরণ চালিয়ে যেতে থাকে।'
লোহিত সাগরে পণ্যবাহী জাহাজে হুতিদের একের পর এক হামলার জবাবে ইয়েমেনে পাল্টা হামলা করা হচ্ছে বলে দাবি পশ্চিমাদের। ইসরায়েল হামাস যুদ্ধে হুতিরা প্রকাশ্যে হামাসের প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়েছে। এর অংশ হিসেবেই তারা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হামলা চালাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও তাদের আট মিত্র দেশ শুক্রবার জানিয়েছে, ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে তাদের সম্মিলিত অভিযানের উদ্দেশ্য হলো 'লোহিত সাগরে স্থিতিশীলতা' ফিরিয়ে আনা।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, কানাডা, ডেনমার্ক, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে আসা এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে লোহিতসাগরের অস্থিরতা কমিয়ে সেখানে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা'।
ইয়েমেনের ভূখণ্ডে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের প্রাণঘাতী যৌথ হামলাকে অন্য দেশের বিরুদ্ধে 'ভয়ংকর সশস্ত্র আগ্রাসন' বলে চিহ্নিত করেছে রাশিয়া। এ হামলার 'কঠোর ভাষায় নিন্দা' জানিয়েছে ইরান এবং লোহিত সাগরের অস্থিরতা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে চীন।
| শনিবার সকালে ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের লক্ষ্যবস্তুতে নতুন করে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। |
হুতিদের ওপর হামলা: যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যে জ্বালানি তেলের দাম ৪ শতাংশ বেড়েছে | গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হত্যাযজ্ঞের মধ্যেই ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের যৌথ হামলার পর থেকে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম হু হু করে বাড়ছে।
ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ৪ শতাংশ বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচার তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৪ শতাংশ বেড়ে ৮০ দশমিক ৫২ ডলারে পৌঁছেছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুড প্রতি ব্যারেল ৪ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৭৪ দশমিক ৯৯ ডলার।
হারগ্রিভস ল্যান্সডাউনের অর্থ ও বাজারের প্রধান সুসান্নাহ স্ট্রিটর বলেন, 'হুতিদের ওপর হামলার পর থেকে তেলের দাম দ্রুত বাড়ছে। লোহিত সাগর দিয়ে চলাচলকারী জাহাজে হুতিদের হামলার আগে গত ডিসেম্বর থেকে ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচার তেলের দাম প্রায় ৭ শতাংশ বেড়েছে।'
'লোহিত সাগরের এই সংকট অব্যাহত থাকলে, এমন পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ সরকার মডেলিং করেছে যে, গ্যাসের দাম ২৫ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০ ডলার পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে', যোগ করেন তিনি।
হুতিদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের হামলার প্রতিক্রিয়ায় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, হুতিদের ওপর হামলার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য লোহিত সাগরকে 'রক্তের সাগরে' পরিণত করার চেষ্টা করছে।
আজ শুক্রবার ইস্তাম্বুলে জুমার নামাজের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'প্রথমত, এসব হামলা আনুপাতিক নয়। এগুলো সবই বলপ্রয়োগের অসামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যবহার।'
অপরদিকে, 'আত্মরক্ষার স্বার্থে' হুতিদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।
ইউক্রেন সফরে গিয়ে সুনাক বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য খুবই পরিষ্কার। এই অঞ্চলে উত্তেজনা কমাতে এবং স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে এই হামলা চালানো হয়েছে। কেননা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যা ঘটে চলেছে তার জন্য মিত্ররা নিন্দা জানানোর পাশাপাশি হুতিদের নিবৃত্ত করার আহ্বান জানিয়ে আসছিল।'
লোহিত সাগরে আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় চলাচলকারী জাহাজের ওপর হামলার প্রতিশোধ হিসেবে হুতিদের ব্যবহৃত এলাকাগুলোয় আজ ভোরে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, কানাডা ও নেদারল্যান্ডসের সহযোগিতায় এই হামলা চালানোর কথা জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
হুতিদের সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারে তার এক্স (সাবেক টুইটার) প্রোফাইলে এক পোস্টে বলেন, 'এসব হামলায় আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর পাঁচ সদস্য শহীদ হয়েছেন ও অপর ছয় জন আহত হয়েছেন।'
আরওহুতি কারা, লোহিত সাগরে কেন তারা ‘মূর্তিমান আতঙ্ক’
| গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হত্যাযজ্ঞের মধ্যেই ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের যৌথ হামলার পর থেকে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম হু হু করে বাড়ছে। |
তাইওয়ানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাল | দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ তাইওয়ানকে নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনার মধ্যে আগামীকাল দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
দেশটির প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েনের স্থলাভিষিক্ত হবেন নতুন কেউ। নির্বাচনের দৌড়ে আছেন দেশটির তিন রাজনৈতিক দলের তিন প্রার্থী।
ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির (ডিপিপি) সদস্য সাই ২০১৬ ও ২০২০ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করার পর তার দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ করছেন।
পার্শ্ববর্তী দেশ চীন তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ মনে করলেও, ডিপিপি আদর্শগতভাবে তাইওয়ানকে সার্বভৌম জাতি হিসেবে দেখে। দেশটির বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিপিপির লাই চিং তে আছেন নির্বাচনের দৌড়ে।
অপরদিকে, বিরোধী দল কুয়োমিনতাং তাইওয়ানকে চীনের অংশই মনে করে। এ দলের সদস্য এবং রাজধানী তাইপের মেয়র হো ইয়ু ইহ এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
এ ছাড়া, ২০১৯ সালে গঠিত মধ্যপন্থী বিকল্প দল তাইওয়ান পিপলস পার্টির (টিপিপি) সদস্য এবং তাইপের সাবেক মেয়র কো ওয়েন–জে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী।
কয়েক দশকের সামরিক শাসনের পর তাইওয়ানে ১৯৯৬ সালে প্রথম সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তখন থেকে কুয়োমিনতাং ও ডিপিপি থেকেই দেশটির প্রেসিডেন্ট হয়েছে।
এটি তাইওয়ানের অষ্টম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। প্রতি চার বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয় এ নির্বাচন। একজন সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকতে পারেন।
দেশটির দুই কোটি ভোটার এই তিন প্রার্থীর মধ্য থেকে তাদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন।
স্ব-শাসিত তাইওয়ানকে চীন নিজেদের অংশ মনে করে। ২০২২ সালে চীনের আপত্তি অগ্রাহ্য করে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বাড়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের।
সম্প্রতি তাইওয়ান প্রণালী এবং দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে চীন।
| দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ তাইওয়ানকে নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনার মধ্যে আগামীকাল দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। |
ইয়েমেনে হুতিদের ওপর হামলায় নিহত ৫, চীনের উদ্বেগ | ইয়েমেনের ভূখণ্ডে হুতি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূখণ্ডে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় পাঁচ জন নিহত ও ছয় জন আহত হয়েছেন।
আজ শুক্রবার হুতি বিদ্রোহীদের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
হুতি বিদ্রোহীদের সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারে তার এক্স (সাবেক টুইটার) প্রোফাইলে পোস্ট করে বলেন, 'এসব হামলায় আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর পাঁচ সদস্য শহীদ হয়েছেন ও অপর ছয় জন আহত হয়েছেন।'
অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও তাদের আট মিত্র দেশ শুক্রবার জানিয়েছে, ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে তাদের সম্মিলিত অভিযানের উদ্দেশ্য হল 'লোহিত সাগরে স্থিতিশীলতা' ফিরিয়ে আনা।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, কানাডা, ডেনমার্ক, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে আসা এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে লোহিতসাগরের অস্থিরতা কমিয়ে সেখানে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা'।
ইরান ইয়েমেনের ভূখণ্ডে হামলার প্রতি 'কঠোর ভাষায় নিন্দা' জানিয়েছে।
চীন জানায়, 'আমরা লোহিত সাগরের অস্থিরতা বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন'।
এই হামলার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর তেলের দাম দুই শতাংশ বেড়ে গেছে।
ভয়েস অব আমেরিকা জানিয়েছে, ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের পরিচালিত হামলা নিয়ে আলোচনা করার জন্য আজ শুক্রবার রাশিয়া জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডেকেছে।
হামলার পর হুতিদের মুখপাত্র জানান, এই হামলার পেছনে কোনো যুক্তি নেই এবং তারা লোহিত সাগরে ইসরায়েল অভিমুখে যাত্রাকারী সব জাহাজে হামলা অব্যাহত রাখবে।
| ইয়েমেনের ভূখণ্ডে হুতি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূখণ্ডে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় পাঁচ জন নিহত ও ছয় জন আহত হয়েছেন। |
ইয়েমেনে হুতি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের স্থল, বিমান ও নৌ হামলা | যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সামরিক বাহিনী ইয়েমেনের হুতি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে বারবার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় হুতিদের বিরুদ্ধে এই হামলা চালানো হয়।
আজ শুক্রবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এই তথ্য জানিয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানান, তিনি গতকাল 'লোহিত সাগরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হুতিদের নজিরবিহীন হামলার সরাসরি প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন'।
হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বাইডেন জানান, তার নির্দেশে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী যুক্তরাজ্যের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে ইয়েমেনের বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে সফল হামলা চালিয়েছে। এই অবস্থানগুলো ব্যবহার করে হুতি বিদ্রোহীরা 'বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নৌপথের অন্যতম', লোহিত সাগরে নৌযানের স্বাধীন চলাচলে বিপদের সৃষ্টি করেছিল।
তিনি আরও জানান, এই অভিযানে সহযোগিতা করেছে অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, কানাডা ও নেদারল্যান্ডস।
'আমি আমাদের জনগণকে সুরক্ষা দিতে ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের পথ সুগম করতে প্রয়োজন হলেও আরও সরাসরি উদ্যোগ নিতেও দ্বিধা বোধ করব না', বলেন বাইডেন।
মার্কিন বিমানবাহিনীর কেন্দ্রীয় কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল অ্যালেক্স গ্রিনকেউইচ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রবাহিনী 'ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের ১৬ অবস্থানের প্রায় ৬০ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায়। এর মধ্যে আছে নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র, গোলাবারুদের মজুত, লঞ্চিং সিস্টেম, উৎপাদনকেন্দ্র ও আকাশ হামলা প্রতিরোধের রাডার ব্যবস্থা।'
বিশ্লেষকদের মতে, লোহিত সাগরে বাড়তে থাকা ঝুঁকির মোকাবিলায় এই উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনের সরাসরি হামলা এড়ানোর চেষ্টা চালিয়েছে।
ইতোমধ্যে এ অঞ্চলে গাজায় হামাস-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিশ্লেষকদের মতে, এ পরিস্থিতিতে ইয়েমেনের বিরুদ্ধে এই হামলায় পুরো অঞ্চলেই ছড়িয়ে পড়তে পারে সংঘাত।
হুতিরা প্রকাশ্যে হামাসের প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়েছে এবং মূলত, এই সমর্থনের অংশ হিসেবেই তারা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হামলা চালাচ্ছে।
গাজার যুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ইরাক ও সিরিয়ায় ইরান সমর্থিত বাহিনীর ওপর হামলা চালালেও ইয়েমেনে এটাই তাদের প্রথম প্রকাশ্য হামলা।
যুদ্ধবিমান ও টমাহক ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহারে এই হামলা চালানো হয়। প্রায় এক ডজন হুতি লক্ষ্যবস্তুতে আকাশ, স্থল ও সাবমেরিন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়। এই অবস্থানগুলো ধ্বংস হলে লোহিত সাগরে হামলা চালানোর সক্ষমতা অনেকটাই হারিয়ে ফেলবে হুতিরা, এই প্রত্যাশায় এই হামলা চালানো হয়। সিএনএনকে এক মার্কিন কর্মকর্তা এই তথ্য জানান।
গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার মধ্যে ছিল রাডার ব্যবস্থা, ড্রোন, ক্রুজ ও ব্যালিসটিক ক্ষেপণাস্ত্রের মজুত ও নিক্ষেপের লঞ্চ সাইট।
দ্বিতীয় এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, সশস্ত্র সাবমেরিন ইউএসএস ফ্লোরিডা এই হামলায় অংশ নেয়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা জানান, হুতিদের ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত জানা না গেলেও এটুকু বলা যায়, তারা 'উল্লেখযোগ্য পরিমাণে' ক্ষতির শিকার হয়েছে।
তিনি জানান, 'বেসামরিক জনগোষ্ঠীর ওপর কোনো হামলা চালানো হয়নি। আমাদের লক্ষ্যবস্তু ছিল সুনির্দিষ্ট এবং নিখুঁত অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে যাতে লক্ষ্যবস্তু ছাড়া অন্য কোথায় হামলা না হয়'।
ইয়েমেনের মার্কিন হামলা নজিরবিহীন নয়। যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সম্পর্ক কাউন্সিলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০২ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত দেশটি ইয়েমেনের বিরুদ্ধে ৪০০টি বিমানহামলা চালিয়েছে।
| যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সামরিক বাহিনী ইয়েমেনের হুতি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে বারবার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় হুতিদের বিরুদ্ধে এই হামলা চালানো হয়। |
যেসব অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকার মামলা | গত ২৯ ডিসেম্বর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগ এনে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) বা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে দুদিনের শুনানি।
হামাস পরিচালিত ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, ইসরায়েল তাদের ২৩ হাজার নাগরিককে হত্যা করেছে, যার মধ্যে ১০ হাজার শিশু।
এই ঘটনাকে দক্ষিণ আফ্রিকা গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করেছে, কারণ তাদের ভাষ্য, ১৯৪৮ সালের জেনোসাইড কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল। আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে, কোনো গোষ্ঠীর সদস্যদের হত্যা করা বা শারীরিক-মানসিক ক্ষতিসাধন, আংশিক বা সম্পূর্ণ ধ্বংসযজ্ঞ চালানো, মানবশিশুর জন্মে বাধাদান ও উদ্বাস্তুতে পরিণত করার মতো ব্যাপারগুলোকে গণহত্যা চালানোর উপায় বলে মনে করা হয়।
গাজায় এসব ব্যাপারই ঘটিয়ে চলেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাই তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ এনেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতকে অনুরোধ জানিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, যেন যত দ্রুত সম্ভব 'প্রোভিশনাল মেজারস' ব্যবহার করে আদালত ইসরায়েলকে থামায়। মূলত ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে এই জরুরি আদেশ দিয়ে আগেভাগেই ধ্বংসলীলা থামিয়ে দেওয়া যায়৷ এক্ষেত্রে ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তার জন্য জেনোসাইড কনভেনশনের লঙ্ঘনকারী ইসরায়েল যেন দায়মুক্তি না পায়, সেটিও দক্ষিণ আফ্রিকার চাওয়া।
দক্ষিণ আফ্রিকার অভিযোগ প্রত্যাখান করেছে ইসরায়েল। নেতানিয়াহু বলছেন, 'গণহত্যার জন্য আমরা দায়ী নই, দায়ী হামাস। তারা যদি পারত আমাদের সবাইকে হত্যা করত। বরং, আইডিএফ (ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) যথাসম্ভব নৈতিকতার সঙ্গে কাজ করছে।'
প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারযোগও এই মামলাকে 'অবান্তর' ও এই অভিযোগকে 'ব্লাড লাইবেল' এর তুল্য মনে করছেন।
গাজায় ২৩ হাজার মানুষের মৃত্যুকে ইসরায়েল 'আত্মরক্ষার্থে' করতে হয়েছে বলে জানিয়েছে। গত মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনকে হারযোগ বলেছেন, 'আন্তর্জাতিক মানবতাবাদী আইন অনুযায়ীই নিজেদের রক্ষা করার অধিকার থেকেই আমাদের এই পদক্ষেপ।'
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাতিসংঘ গঠিত হলে নেদারল্যান্ডের হেগ শহরে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) বা আন্তর্জাতিক আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে দ্বন্দ্বের নিষ্পত্তি ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাকে আইনি পরামর্শ দেওয়ার কাজ করে এই আদালত।
আফ্রিকার জাতীয় কংগ্রেসের ফিলিস্তিনের সঙ্গে সংহতি জ্ঞাপনের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকায় চলা দীর্ঘ সংগ্রামের সমান্তরালে চলেছে ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামের প্রতি তাদের সংহতি জ্ঞাপন। ৭ অক্টোবরের আক্রমণের সমালোচনা করেছিল দেশটি, দাবি জানিয়েছিল জিম্মিদের মুক্তির।
'গাজার জনগণের ওপর চালানো হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে আমরা, তাই আন্তর্জাতিক আদালতে গিয়েছি,' বলছেন রাষ্ট্রপতি সেরিল রামাফোসা। 'একসময় বৈষম্য, বর্ণবাদ, জাতিভেদ ও রাষ্ট্রের মদদে ঘটা সহিংসতার তিক্তস্বাদ নিতে হয়েছে আমাদের; কাজেই আমরা পরিষ্কার জানি, ইতিহাসের সঠিক পক্ষেই আমরা দাঁড়িয়েছি।'
প্রাথমিক পদক্ষেপগুলো কয়েক সপ্তাহমাত্র স্থায়ী হবে, কাজেই দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষেই হোক, বা বিপক্ষে; কয়েক সপ্তাহের ভেতরেই আদালত রায় দেবে বলে মনে করা যায়। তবে মূল মামলার ক্ষেত্রে আরো অনেক সময় লাগবে। আইসিজে-র বিচারিক কার্যক্রম এক দীর্ঘ প্রক্রিয়া। রাষ্ট্রগুলোর পক্ষে আইনি প্রতিনিধিদের মৌখিক তর্কাতর্কির পর বিস্তারিত লিখিত প্রতিবেদন দিতে হবে। ফলে মামলায় আদেশ পেতে তিন-চার বছর সময় লাগতে পারে।
দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ নিয়েছে বেশকিছু দেশ৷ মালয়েশিয়া, তুরস্ক, জর্ডান, বলিভিয়া, মালদ্বীপ, নামিবিয়া, পাকিস্তান, কলম্বিয়া এবং ওআইসি-র সদস্য রাষ্ট্রগুলো রয়েছে এই তালিকায়।
ইউরোপিয় ইউনিয়ন এক্ষেত্রে চুপ, তবে ইসরায়েল তার বরাবরের সমর্থক ও অস্ত্র সরবরাহকারী আমেরিকার সমর্থন পাচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাট মিলারের মতে, 'ইসরায়েল গণহত্যা চালাচ্ছে, এমন কোনো প্রমাণ মেলেনি৷ তবে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রদান ও মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্তের ভার তাদের নিতে হবে।'
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি, এপি
| গত ২৯ ডিসেম্বর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগ এনে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) বা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে দুদিনের শুনানি। |
ভারতের মালদ্বীপ বর্জন, পর্যটনে ধস | সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে করা মালদ্বীপের তিন উপমন্ত্রীর অবমাননাকর মন্তব্যে দুই দেশের সম্পর্কে ফাটল ধরেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মালদ্বীপ বর্জনের ডাকে মুখ থুবড়ে পড়ছে দেশটির পর্যটন শিল্প। এমন পরিস্থিতিতে চীনের শরণাপন্ন হয়েছেন দ্বীপ দেশটির প্রেসিডেন্ট।
আজ বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লাক্ষাদ্বীপ সফরকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে তিক্ততা সৃষ্টি হয়েছে।
দক্ষিণ ভারতের কেরালার উপকূলের কাছাকাছি এই দ্বীপে গিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নিজের কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করেন। সেখানে তাকে সমুদ্রতটের পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে ও সাগরে ডুব দিতে দেখা যায়।
মোদি তার পোস্টে মালদ্বীপের কথা উল্লেখ না করলেও অনেকেই ধরে নেন, তিনি ভারতের নাগরিকদের মালদ্বীপে না গিয়ে লাক্ষাদ্বীপে ছুটি কাটাতে যেতে উদ্বুদ্ধ করছেন।
মালদ্বীপের তিন উপমন্ত্রী এই পোস্টে প্রতিক্রিয়া জানান। তারা মোদিকে 'ভাঁড়', 'জঙ্গি' ও 'ইসরায়েলের খেলার পুতুল' হিসেবে অভিহিত করেন।
যুব উন্নয়ন, তথ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের এই তিন উপমন্ত্রীর এসব 'অসম্মানজনক' মন্তব্য থেকে মালদ্বীপ সরকার দ্রুত নিজেকে আলাদা করে নেয়। সরকারের পক্ষে বলা হয়, এটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের নিজস্ব অভিমত। মালদ্বীপ সরকারের সঙ্গে এর যোগসূত্র নেই। তিন উপমন্ত্রীকে সরকার সাময়িক বরখাস্তও করে। তাদের পোস্টগুলো ইতোমধ্যে মুছে দেওয়া হয়েছে।
তা সত্ত্বেও এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান ভারতীয়রা। অনেকেই মন্ত্রীদের এসব মন্তব্যের স্ক্রিনশট নিয়ে মালদ্বীপকে বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন। 'বয়কট মালদিভস' হ্যাশট্যাগ এক্স মাধ্যমে বেশ জনপ্রিয়তা পায়।
বলিউডের তারকা থেকে শুরু করে ক্রিকেট খেলোয়াড় পর্যন্ত অনেকেই ছুটি কাটানোর জন্য মালদ্বীপের পরিবর্তে ভারতের নিজস্ব গন্তব্যগুলোয় যাওয়ার আহ্বান জানান।
'চালো লাক্ষাদ্বীপ' (চল লাক্ষাদ্বীপে যাই) হ্যাশট্যাগটিও জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
বলিউড তারকা অক্ষয় কুমার বলেন, 'মালদ্বীপের কর্মকর্তাদের মন্তব্যগুলো বর্ণবাদী ও ঘৃণা প্রকাশকারী।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছি। তাহলে কেন আমরা বিনা উসকানিতে এ ধরনের অযাচিত ঘৃণার শিকার হব? আমি নিজে অনেকবার মালদ্বীপ গিয়েছি এবং জায়গাটির প্রশংসা করেছি, কিন্তু আগে নিজেদের সম্মান রক্ষা করতে হবে। আসুন আমরা ভারতের দ্বীপগুলোতে যাই এবং আমাদের নিজেদের পর্যটন শিল্পকে সমর্থন জানাই।'
গত সোমবার ভারতের পর্যটন ওয়েবসাইট ইজিমাইট্রিপ জানিয়েছে, তারা মালদ্বীপের ফ্লাইটের বুকিং নিচ্ছে না।
ভারতের বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন 'দ্য কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স' মালদ্বীপের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছে।
এক কূটনীতিক সূত্রের বরাত দিয়ে সিএনএন আরও জানায়, মালদ্বীপে ভারতের হাইকমিশন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে এ ঘটনার 'কড়া ভাষায়' উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সংগঠনটির মহাসচিব প্রবীণ খান্ডেলওয়াল বলেন, 'মালদ্বীপ ক্ষমা না চাওয়া বা প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত ভারতের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় তাদের সঙ্গে ব্যবসা করা থেকে বিরত থাকবে।'
প্রথাগতভাবে মালদ্বীপের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্টরা প্রথম বৈদেশিক সফরের গন্তব্য হিসেবে ভারতকে বেছে নিলেও 'ভারতবিরোধী' মুইজ্জু এই প্রথা ভেঙে চীন সফর করেছেন।
গত বছরের নভেম্বরে পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস দলের নেতা হিসেবে মুইজ্জু মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তার প্রতিপক্ষ ছিলেন মালদ্বীপ ডেমোক্রেটিক পার্টির ভারতপন্থি নেতা হিসেবে পরিচিত ইব্রাহিম মোহম্মদ সোলি।
সোলি সরকার ভারতের ওপর অনেক নির্ভরশীল ছিল। অপরদিকে, মুইজ্জুর প্রধান নির্বাচনী স্লোগান ছিল 'আউট ইন্ডিয়া' বা দেশকে ভারতের প্রভাবমুক্ত করা। ফলে, নির্বাচনে জেতার পর তিনি সে দেশে অবস্থানরত ৭৫ ভারতীয় সেনাকে ফেরত যাওয়ার নির্দেশ দেন।
আজ বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মুইজ্জু তার প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে বেইজিং এসে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে সমর্থ হয়েছেন।
গ্রেট হল অব পিপল সম্মেলন কেন্দ্রে বক্তব্য দেওয়ার সময় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মুইজ্জুকে 'পুরোনো বন্ধু' বলে সম্বোধন করেন। মালদ্বীপের সঙ্গে 'কৌশলগত অংশীদারিত্বের' মাধ্যমে চীন সেখানে আরও বিনিয়োগ বাড়াতে যাচ্ছে।
'চীন ও মালদ্বীপের সম্পর্ককে আরও সামনে এগিয়ে যাওয়ার ঐতিহাসিক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে,' বলেও মন্তব্য করেন শি।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুসারে, মালদ্বীপের সরকারি দেনার ২০ শতাংশই চীনের কাছে। এর পরিমাণ ১৩৭ কোটি ডলার। শীর্ষ ঋণদাতার তালিকার পরের দুই দেশ ভারত ও সৌদি আরব।
বিশ্লেষকদের মতে, ভারত থেকে পর্যটক যাওয়ার হার দ্রুত কমে যাওয়ায় চীনের শরণাপন্ন হয়েছেন মুইজ্জু।
প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে মালদ্বীপে আরও পর্যটক পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে গত মঙ্গলবার বলেন, 'করোনা মহামারি আঘাত হানার আগে মালদ্বীপে চীনের পর্যটক সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় আসতেন। আমি চাই, চীন তাদের সে অবস্থান ফিরে পাক। আরও বেশি চীনা পর্যটক মালদ্বীপে আসুক।'
মালদ্বীপের অর্থনীতি অনেকটাই পর্যটননির্ভর। দেশটির মোট প্রবৃদ্ধির ২৮ শতাংশ আসে পর্যটন থেকে। বৈদেশিক মুদ্রার ৬০ শতাংশ আসে এর বদৌলতে।
মালদ্বীপের জনসংখ্যা সাড়ে পাঁচ লাখ। প্রতি বছর এখানে এর চেয়ে বেশি সংখ্যক পর্যটক আসেন। তাদের বড় অংশ ভারতীয়।
মালদ্বীপে ভারতের দূতাবাসের তথ্য অনুযায়ী—২০২২ সালে ভারত থেকে পর্যটক গিয়েছেন দুই লাখ ৪১ হাজার এবং ২০২৩ সালে দুই লাখ।
সম্প্রতি বলিউড ও ক্রিকেট জগতের তারকা, ধনী ও উচ্চবিত্তদের ছুটি কাটানোর পছন্দের জায়গা হয়ে উঠেছে মালদ্বীপ।
চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন হলেও বা সে দেশ থেকে আরও পর্যটক এলেও, ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক না রেখে উপায় নেই মুইজ্জুর।
মালদ্বীপের রাজনৈতিক মহলে মোদিকে নিয়ে মন্ত্রীদের 'অবমাননাকর' মন্তব্যের সমালোচনা হচ্ছে। সে দেশের রাজনীতিকদের বড় অংশ মনে করছেন, সরকারের উচিত ভারতের কাছে ক্ষমা চাওয়া ও দুঃখ প্রকাশ করা।
| সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে করা মালদ্বীপের তিন উপমন্ত্রীর অবমাননাকর মন্তব্যে দুই দেশের সম্পর্কে ফাটল ধরেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মালদ্বীপ বর্জনের ডাকে মুখ থুবড়ে পড়ছে দেশটির পর্যটন শিল্প। এমন পরিস্থিতিতে চীনের শরণাপন্ন হয়েছেন দ্বীপ দেশটির প্রেসিডেন্ট। |
ইউক্রেনে যা গণহত্যা, গাজায় কেন তা নয় | সদ্য বিদায় নেওয়া ২০২৩ সাল ছিল যুদ্ধের বছর। সাম্প্রতিক ইতিহাসে একইসঙ্গে বিশ্বের দুই প্রান্তে দুটি বড় আকারের যুদ্ধের নজির নেই। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয় ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসন, যা এখনো চলছে। অন্যদিকে গত বছরের অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্যে গাজা উপত্যকায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে দুই দেশের প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর মধ্যে অপেক্ষাকৃত দুর্বল ইউক্রেনের শক্তির যে ঘাটতি, তা পূরণে এগিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্র দেশগুলো।
বিপরীতে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে হামাসের যে কথিত যুদ্ধ তার মূল্য দিতে হচ্ছে গাজার নিরীহ, নিরপরাধ ও বেসামরিক বাসিন্দাদের। এক্ষেত্রে অধিকৃত পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি সরকার, আরব লীগ বা অন্য কোনো দেশ গাজার বাসিন্দাদের সুরক্ষা নিশ্চিতে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না কিংবা রাখছে না। এদিকে আগ্রাসী ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য মিত্রদের বড় আকারের সামরিক সহায়তা দেওয়ার কাজ থেমে নেই।
বিশ্লেষকদের অভিমত, ইউক্রেন বছরের পর বছর রাশিয়ার হামলা ঠেকাতে সক্ষম। কিন্তু গাজার ২৩ লাখ মানুষের বেশিরভাগই ক্ষুধার্ত, আহত, অসুস্থ ও নিহত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন। ইতোমধ্যে এই জনগোষ্ঠীর ৮০ শতাংশের বেশি বাস্তুচ্যুত হয়ে অনিশ্চিত জীবনযাপন করছেন। গাজার বেশিরভাগ দালান মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি ট্যাংক ও বিমান।
এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের দুই প্রান্তের যুদ্ধে ইউক্রেনীয়রা গণহত্যার শিকার হচ্ছে বলে দাবি জানানো হলেও, গাজায় গণহত্যার অভিযোগকে কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র।
এটি মানবাধিকার প্রশ্নে দ্বিমুখী পশ্চিমা নীতির আরেকটি অকাট্য প্রমাণ হিসেবে হাজির করছেন বিশ্লেষকরা।
৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় নিহত হন প্রায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি নাগরিক, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক ব্যক্তি। এরপর পরবর্তী তিন মাসে অল্প কয়েকজন জিম্মি ছাড়া আর কোন ইসরায়েলি বেসামরিক ব্যক্তি নিহতের খবর পাওয়া যায়নি।
আল জাজিরা জানিয়েছে, হামাসের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক হামলা শুরুর পর ইসরায়েল তার ১৭২ সেনা হারিয়েছে। অপরদিকে, ডিসেম্বরে ইসরায়েলের সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, যুদ্ধে প্রতি দুই জন বেসামরিক ব্যক্তির বিপরীতে একজন করে হামাস যোদ্ধা নিহত হচ্ছে। এই সূত্র মতে, এই যুদ্ধে অন্তত সাত হাজার হামাস যোদ্ধা প্রাণ হারিয়েছেন বলে ধরে নেওয়া যায়। সেসময় নিহত বেসামরিক ফিলিস্তিনির সংখ্যা ছিল প্রায় ১৫ হাজারের মতো।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ২৩ হাজার ২১০ ফিলিস্তিনি। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
মন্ত্রণালয় তাদের বিবৃতিতে জানায়, আরও ৫৯ হাজার ১০০ জন আহত হয়েছেন। হতাহতের প্রায় ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু।
ইসরায়েলের দাবি, হামাস যোদ্ধারা গাজার বেসামরিক ব্যক্তিদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা বেসামরিক ব্যক্তিদের মাঝে ও বেসামরিক স্থাপনায় লুকিয়ে থাকে। যে কারণে হাসপাতাল, মসজিদ, গির্জা ও স্কুলের মতো স্থাপনাও ইসরায়েলি হামলা থেকে রেহাই পায়নি।
নভেম্বরে জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে নিহত হয়েছেন ইউক্রেনের দশ হাজারেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। রাশিয়া তাদের বেসামরিক ব্যক্তি নিহতের কোন তথ্য প্রকাশ করেনি।
২০২২ সালে ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এই যুদ্ধে ৫৬০ জনেরও বেশি শিশু নিহত হয়েছে আর ১৮ হাজার ৫০০ মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইউক্রেনে জাতিসংঘের মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ মিশন।
তবে এই যুদ্ধে নিহত ও আহত সেনার সংখ্যা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। ডিসেম্বরে মার্কিন গোয়েন্দা বাহিনীর এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সিএনএন জানায়, এই যুদ্ধে তিন লাখ ১৫ হাজার সেনা হারিয়েছে রাশিয়া। যুদ্ধ শুরুর আগে তাদের নিয়মিত সেনার সংখ্যা ছিল তিন লাখ ৬০ হাজার। অর্থাৎ দুই বছরের যুদ্ধে ৮৭ শতাংশ সেনা হারিয়েছে রাশিয়া। তবে এই সংখ্যায় আহত ও নিহত উভয়ই অন্তর্ভুক্ত।
নভেম্বরে ইউক্রেনের এক নাগরিক সমাজ সংগঠনের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, এই যুদ্ধে ৩০ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা প্রাণ হারিয়েছেন। আগস্টে নিউ ইয়র্ক টাইমস মার্কিন সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছিল, সংখ্যাটি প্রায় ৭০ হাজার। একই প্রতিবেদনে নিহত রুশ সেনার সংখ্যা এক লাখ ২০ জন বলে দাবি করা হয়।
সব মিলিয়ে বলা যায়, এই যুদ্ধে নিহত বেসামরিক বাসিন্দাদের সংখ্যা নিহত সেনাদের তুলনায় খুবই নগণ্য।
১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিশ্বব্যাপী গণহত্যা বন্ধে 'জেনোসাইড কনভেনশন' চুক্তি উপস্থাপন করা হয়। ২০২২ সাল নাগাদ ১৫২টি সদস্য দেশ এতে সাক্ষর করেছে, যার মধ্যে আছে ইউক্রেন, রাশিয়া, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন। স্বাক্ষরকারী সব দেশ এই চুক্তির শর্ত মানতে বাধ্য।
এই চুক্তিতে উল্লেখ করা গণহত্যার সংজ্ঞা হল, 'কোনো জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রের সদস্যদের আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে ধ্বংসের অভিপ্রায়ে সংঘটিত কার্যক্রম'।
২০২ সালের মার্চে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিজে) রাশিয়ার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনে ইউক্রেন। অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা হিসেবে আন্তর্জাতিক আদালত রাশিয়াকে তাৎক্ষণিকভাবে এই অভিযান বন্ধের নির্দেশ দেয়।
রাশিয়া এই অভিযোগ অস্বীকার করে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করে। এই অভিযোগ ও আপিল নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়নি আইসিজে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর থেকে একাধিকবার বিষয়টিকে 'গণহত্যা' বা 'যুদ্ধাপরাধ' বলে অভিহিত করলেও গণহত্যার বিষয়টি এখনো প্রমাণিত নয়।
টাইম ম্যাগাজিন মার্চে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পূর্ব ইউরোপ ও সেন্ট্রাল এশিয়া কার্যালয়ের প্রধান ডেনিস ক্রিভোশিভের বরাত দিয়ে জানায়, রাশিয়ার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ প্রমাণের স্বপক্ষে এখনো যথেষ্ঠ প্রমাণ নেই।
'এ ধরনের অভিযোগ অনেক গুরুতর এবং এই শব্দটি ব্যবহারের আগে সবগুলো বিষয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে', যোগ করেন তিনি।
অপরদিকে, ডিসেম্বরে গাজায় 'গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ডে' জড়িত থাকার অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, 'ইসরায়েল গাজায় আন্তর্জাতিক অপরাধ, যেমন—মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ, এর পাশাপাশি গণহত্যা বা এ সম্পর্কিত অপরাধের সীমারেখা লঙ্ঘন করেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।'
গণহত্যার অভিযোগকে 'ভিত্তিহীন' দাবি করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, 'ইসরায়েল ঘৃণাভরে দক্ষিণ আফ্রিকার এই অপবাদ প্রত্যাখ্যান করছে।'
এর প্রেক্ষাপটে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার গতকাল বুধবার মন্তব্য করেন, গাজায় এ ধরনের কার্যক্রম হচ্ছে বলে মনে করে না যুক্তরাষ্ট্র।
মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মিলার বলেন, 'এ ধরনের অভিযোগকে হালকা ভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে আমরা এমন কোনো কর্মকাণ্ড দেখিনি যাকে গণহত্যা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যায়। এটাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণ।'
উভয় যুদ্ধেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের অবস্থানগত কারণে কূটনৈতিক ভাষাতেও রয়েছে আকাশ-পাতাল পার্থক্য।
মূলত ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ও সামরিক স্থাপনার বিরুদ্ধে রাশিয়ার হামলাকে, 'সহিংস, বর্বর, যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা'—এ ধরনের সব বিশেষণেই বিশেষায়িত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
অপরদিকে, গাজার নিরীহ ও নিরপরাধ ফিলিস্তিনি নাগরিকদের ওপর সর্বাত্মক হামলার ক্ষেত্রে দেশটি বলছে, 'গণহত্যা হচ্ছে না' বা তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ২২ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হলেও তারা বলছে, 'ইসরায়েল এমন কিছু করেনি যাকে গণহত্যা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যায়'।
বারবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে, রাশিয়াকে বিরত রাখতে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলো তাদের বিরুদ্ধে একের পর এক বিধিনিষেধ আরোপ করে যাচ্ছে। ইউক্রেনকে সরবরাহ করছে অত্যাধুনিক অস্ত্র, সরঞ্জাম ও অর্থ। তাদের দাবি, ইউক্রেনকে সুরক্ষা দিতে এ সব অস্ত্র দেওয়া হচ্ছে।
বিপরীতে নির্যাতিত ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর ওপর ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার রসদ যোগাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলের জন্য স্বাভাবিক সময়েই প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের সুনির্দিষ্ট সামরিক বাজেট রয়েছে। এখন যুদ্ধকালীন সময়ে তা কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে। সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই সর্বাত্মক হামলার বিরুদ্ধে নিন্দা জানালেও যুক্তরাষ্ট্র এখনো ইসরায়েলের প্রতি অন্ধ সমর্থন বজায় রেখেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই দ্বৈত ভূমিকা অস্বাভাবিক মনে হলেও অপ্রত্যাশিত নয়। আগ্রাসী ইসরায়েলের প্রধান মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র। অপরদিকে, রাশিয়াকে সেই স্নায়ুযুদ্ধের আমল থেকেই বড় শত্রু হিসেবে বিবেচনা করে দেশটি।
ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণের পাশাপাশি দেশটি থেকে উগ্র জাতীয়তাবাদ দূর করার উদ্দেশ্যে রাশিয়া তাদের 'বিশেষ সামরিক অভিযান' চালাচ্ছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
রাশিয়া আরও দাবি করে, তারা বেসামরিক ব্যক্তি বা অবস্থানে হামলা চালাচ্ছে না। এই যুদ্ধে ইউক্রেনকে অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সহায়তা করছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ আরও বেশ কিছু মিত্র দেশ। মূলত দুই পক্ষের সেনাদের মধ্যেই যুদ্ধক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ রয়েছে এই যুদ্ধ। এ ক্ষেত্রে দুইটি দেশের জাতীয় সেনাবাহিনী একে অপরের বিরুদ্ধে লড়ছে।
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালিয়ে প্রায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলিকে হত্যা করে। হামাসের হাতে জিম্মি হয় ২৫০ জন।
এ ঘটনার পর হামাসকে নির্মূলের অঙ্গীকার করে ইসরায়েল এবং শুরু হয় গাজা উপত্যকায় নির্বিচার ও সর্বাত্মক হামলা। শুরুতে শুধু বিমানহামলা হলেও পরবর্তীতে এতে যোগ দেয় স্থলবাহিনী।
'বেসামরিক স্থাপনায় হামাসের যোদ্ধারা লুকিয়ে আছে', এই যুক্তি দিয়ে এ ধরনের হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। মাঝে কাতারের মধ্যস্থতায় ও বন্দি বিনিময়ের শর্তে সাত দিন যুদ্ধও বন্ধ ছিল। এ সময় উভয় পক্ষের বেশ কিছু আটক মানুষ মুক্তি পান।
কিন্তু ডিসেম্বরের ১ তারিখ যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষে হামলার তীব্রতা বাড়িয়ে দেয় ইসরায়েল। তাদের হামলা খৃস্ট ধর্মাবলম্বীদের উৎসব বড়দিন বা ইংরেজি নববর্ষেও থামেনি।
আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুসারে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে ১১ ও ১২ জানুয়ারি। ইসরায়েল ইতোমধ্যে এই অভিযোগের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে।
কিন্তু এই বিচারিক প্রক্রিয়ায় তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ২০১৯ সালে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ আনে গাম্বিয়া। সেই অভিযোগের আইনি প্রক্রিয়া এখনো চলছে।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকা অভিযোগ দায়ের করার সময় দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া অবলম্বনের অনুরোধ জানায়। ইউক্রেনও রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার সময় একই ধরনের অনুরোধ জানিয়েছিল।
প্রতিবেদন অনুসারে, আইসিজের সিদ্ধান্তে যুদ্ধের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়বে না। তবে যদি দক্ষিণ আফ্রিকা ও ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কোনো সিদ্ধান্ত আসে, তাহলে তা ইসরায়েলের প্রধান মিত্র, অস্ত্রের যোগানদাতা ও পৃষ্ঠপোষক—মার্কিন সরকারের ওপর চাপ তৈরি করতে পারে।
হয়তো ফিলিস্তিনিদের জন্য এটাই শেষ ভরসা। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন হারালে ইসরায়েলি কামান নীরব হতে বাধ্য।
| সদ্য বিদায় নেওয়া ২০২৩ সাল ছিল যুদ্ধের বছর। সাম্প্রতিক ইতিহাসে একইসঙ্গে বিশ্বের দুই প্রান্তে দুটি বড় আকারের যুদ্ধের নজির নেই। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয় ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসন, যা এখনো চলছে। অন্যদিকে গত বছরের অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্যে গাজা উপত্যকায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। |
চাকরি ছেড়ে ‘পিএইচডি সবজিওয়ালা’ বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক | শুনতে কিছুটা অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, ভারতের পাঞ্জাবে চারটি মাস্টার্স ও একটি পিএইচডি ডিগ্রিধারী এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক বর্তমানে রাস্তায় সবজি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়া, নিউজ১৮ ও এনডিটিভি জানিয়েছে, ৩৯ বছর বয়সী ড. সন্দ্বীপ সিং ভারতের পাতালিয়ায় অবস্থিত পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন। কিন্তু চাকরি ছেড়ে বর্তমানে সবজি বিক্রি করে চলছেন তিনি।
বেতন কাটা এবং অনিয়মিত বেতনের মতো সমস্যার মুখোমুখি হয়ে ড. সিং তার চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।
তিনি বলেন, '১১ বছর ধরে আমি পাতিয়ালার পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছি। কিন্তু এত বছরের কঠোর পরিশ্রমের পরও সরকার আমাকে নিয়মিত করেনি।'
ড. সিং প্রায় ১১ বছর ধরে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে চুক্তিভিত্তিক অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন। আইনশাস্ত্রে পিএইচডি ডিগ্রিধারী ড. সিংয়ের পাঞ্জাবি, সাংবাদিকতা এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানসহ চারটি বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি রয়েছে। মজার ব্যাপার হলো, সবজি বিক্রির পাশাপাশি এখনও পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
তিনি বলেন, 'আমি এখনও অধ্যাপক হিসেবে কাজ করতে চাই। কিন্তু পরিস্থিতি অনুকূলে নেই।'
ড. সিং জানান, অধ্যাপক হিসেবে তিনি যা আয় করতেন, সবজি বিক্রেতা হিসেবে তার চেয়ে বেশি আয় করছেন।
নিজের ব্যস্ত সময়সূচির বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, সারাদিন কাজ করে বাড়িতে ফিরে আসন্ন পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেন তিনি।
সবজি বিক্রির জন্য একটি ভ্যান কিনেছেন তিনি। প্রতিদিন এই ভ্যানে করেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে সবজি বিক্রি করেন। তার ভ্যানে লেখা 'পিএইচডি সবজিওয়ালা'।
অধ্যাপক হিসেবে চাকরি ছেড়ে দিলেও ড. সিং এখনও শিক্ষকতার প্রতি তার আবেগ ছাড়তে পারেননি। সবজি বিক্রি থেকে অর্জিত লাভ থেকে একদিন নিজের কোচিং সেন্টার খোলার ইচ্ছা আছে তার।
গ্রন্থনা: আহমেদ হিমেল
| শুনতে কিছুটা অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, ভারতের পাঞ্জাবে চারটি মাস্টার্স ও একটি পিএইচডি ডিগ্রিধারী এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক বর্তমানে রাস্তায় সবজি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। |
ইরানে কাশেম সোলাইমানির সমাধির পাশে জোড়া বোমা হামলায় নিহত শতাধিক | ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কেরমানে জোড়া বোমা হামলায় কমপক্ষে ১০৩ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১৪১ জন।
ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) সাবেক প্রধান কাশেম সোলাইমানির সমাধিস্থলের কাছে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
তেহরান টাইমস জানায়, কাশেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার চতুর্থ বার্ষিকীতে এ হামলার ঘটনা ঘটল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কাশেম সোলাইমানির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার সমাধিস্থলের দিকে শত শত মানুষ হেঁটে যাওয়ার সময় পরপর দুটি বিস্ফোরণ হয়। এ ঘটনার পরপরই আহতদের উদ্ধারে ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়।
তবে কারা, কেন এ হামলা করেছে এখনো তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কোনো সংগঠনও এখন পর্যন্ত এ হামলার দায় স্বীকার করেনি।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি ইরাকের বাগদাদ বিমানবন্দরে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন কাশেম সোলাইমানি।
তাকে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির পর দেশটির 'সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি' বলে মনে করা হতো।
| ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কেরমানে জোড়া বোমা হামলায় কমপক্ষে ১০৩ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১৪১ জন। |
জাপানে দুই উড়োজাহাজের সংঘর্ষে একটিতে আগুন, নিহত ৫ | জাপানের টোকিওর হানেদা বিমানবন্দরে জাপান কোস্টগার্ডের একটি উড়োজাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষে জাপান এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজে আগুন ধরে গেছে।
এ ঘটনায় অন্তত ৫ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
জাপান এয়ারলাইনসের এক মুখপাত্র জানান, উড়োজাহাজদের ৩৭৯ যাত্রীকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্য ৩৬৭ জন যাত্রী ও ১২ জন ক্রু।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় পাওয়া সবশেষ খবর অনুযায়ী, দমকলবাহিনী আগুন নেভানোর কাজ করছেন।
জাপান এয়ারলাইনস জানায়, হোক্কাইডোর নিউ চিতোসে বিমানবন্দর থেকে টোকিওর হানেদা বিমানবন্দরে যাচ্ছিল ফ্লাইট ৫১৬।
জাপান কোস্টগার্ড জানায়, হানেদা বিমানবন্দরে অবতরণের পর ওই উড়োজাহাজের সঙ্গে তাদের একটি উড়োজাহাজের সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষে যাত্রীবাহী ফ্লাইটের কেউ হতাহত হতাহত হননি। তবে, কোস্টগার্ডের উড়োজাহাজের ৬ আরোহীর মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়। পাইলট গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন।
সূত্র–জাপান মিডিয়া
| জাপানের টোকিওর হানেদা বিমানবন্দরে জাপান কোস্টগার্ডের একটি উড়োজাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষে জাপান এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজে আগুন ধরে গেছে। |
জাপানে ভূমিকম্পে মৃত ৩০, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যোগাযোগ বিঘ্নিত | জাপানের পশ্চিমাঞ্চলে নোটো উপসাগরে ইশিকাওয়া উপদ্বীপে গতকাল সোমবারের সাত দশমিক ছয় মাত্রার ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ৩০ এ দাঁড়িয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আকাশ, সড়ক ও রেল যোগাযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার দ্য জাপান টাইমস এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আজ সকালে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এনএইচকের ফুটেজে ইশিকাওয়া উপদ্বীপের ওয়াজিমা এলাকায় একটি সাততলা ভবন পড়ে থাকতে দেখে গেছে। সেখান থেকে ধোয়া উঠতেও দেখা গেছে।
পর্যটনের জন্য খ্যাত এই এলাকাটিতেই অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আজ জাপানি সংবাদমাধ্যম দ্য আসাহি শিম্বুন জানিয়েছে, ভূমিকম্পের ফলে মূলত হোকুরিকু অঞ্চলে আকাশ, সড়ক ও রেল যোগাযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পূর্ব জাপান রেলওয়ে আজ স্থানীয় সময় সকালে দুর্গত এলাকায় রেল চলাচল বন্ধ রেখেছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা ভূমিকম্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও অন্যান্য জরুরি পরিষেবাগুলো পরীক্ষা করে দেখছে।
পশ্চিম জাপান রেলওয়ে জানিয়েছে, তারা চারটি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করেছিল। আজ স্থানীয় সময় ভোরে তা আবার চালু করা হয়।
এ ছাড়াও, নিপ্পন এয়ারওয়েজ নোটো ও কোমাৎসু বিমানবন্দরে আটটি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। ভূমিকম্পে রাস্তা ভেঙে পড়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
জাপান সড়ক পরিবহন তথ্যকেন্দ্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে—আজ স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ১০ মিনিটের দিকে তোকাই-হোকুরিকু এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ভূমিকম্প কবলিত ইশিকাওয়া উপদ্বীপের অনেক এলাকায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আছে। স্থানীয় সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি যাচাই করছে।
আজ দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা গণমাধ্যমকে জানান, সরকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে ইশিকাওয়ায় জরুরি দুর্যোগ মোকাবিলা কেন্দ্র খুলেছে।
তিনি বলেন, 'সময় যত যাচ্ছে ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে দেখা যাচ্ছে। যারা ধ্বংসস্তূপে আটকে আছেন তাদেরকে দ্রুত উদ্ধার করা প্রয়োজন।'
প্রায় এক হাজার কর্মী উদ্ধার কাজ করছেন বলেও তিনি জানান।
ইশিকাওয়া উপদ্বীপে প্রায় ৩৩ হাজার বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। কয়েকটি শহরে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অন্তত ১৯টি চিকিৎসা দল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কাজ করছে।
সেই এলাকায় আজ রাতে বৃষ্টি হতে পারে। এর ফলে ভূমিধসের আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
আজ সকাল পর্যন্ত ৪৬ হাজারের বেশি মানুষকে ইশিকাওয়া ও তোয়ামা উপদ্বীপ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম নিউ স্ট্রেইটস টাইমস জানিয়েছে গতকাল সোমবার থেকে আজ মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত জাপানে ১৫৫ বার ছোট ছোট ভূকম্পন হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জাপানের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে—অধিকাংশ কম্পন ছিল তিন মাত্রার। তবে এর মধ্যে ছয় মাত্রার কম্পনও ছিল।
| জাপানের পশ্চিমাঞ্চলে নোটো উপসাগরে ইশিকাওয়া উপদ্বীপে গতকাল সোমবারের সাত দশমিক ছয় মাত্রার ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ৩০ এ দাঁড়িয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আকাশ, সড়ক ও রেল যোগাযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে। |
হুতিদের ৩ নৌকা ডুবিয়ে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র জানাল, ‘বড় পরিসরে সংঘাত চাই না’ | লোহিত সাগরে মার্কিন বাহিনী ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের তিনটি ছোট নৌকা ডুবিয়ে দেওয়ার পর হোয়াইট হাউস বলেছে, তারা মধ্যপ্রাচ্যে 'বড় পরিসরে সংঘাত চায় না'।
আজ সোমবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়ে বলে, গতকাল লোহিত সাগরে মার্কিন বাহিনীর হেলিকপ্টারকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার পর সেনারা হুতিদের তিনটি ছোট নৌকা ডুবিয়ে দিয়েছে। এতে নৌকার আরোহীরা মারা যান।
গতকাল বার্তা সংস্থা রয়টার্স হুতি, যুক্তরাষ্ট্র ও পণ্য পরিবহন প্রতিষ্ঠান মেয়ার্স্কের কমকর্তাদের বরাত দিয়ে জানায়, নৌকা ডুবির ঘটনায় হুতিদের ১০ সদস্য মারা গেছেন।
গাজায় ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলা বন্ধের দাবি জানিয়ে ইয়েমেনের হুতিরা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে।
সিএনএন'র প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক রুট লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচল নির্বিঘ্ন করতে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট গঠনের পর এই প্রথম মার্কিন বাহিনী সরাসরি হুতিদের ওপর হামলায় চালালো।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল হোয়াইট হাউস জানায়, তারা মধ্যপ্রাচ্যে 'বড় পরিসরে সংঘাত চায় না।'
দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি গতকাল এবিসি নিউজকে বলেছেন, 'আমরা চাই না এই অঞ্চলে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ুক, আমরা হুতিদের সঙ্গেও সংঘাত চাই না। সবচেয়ে ভালো হয়—হুতিরা হামলা বন্ধ করুক। এ কথা আমরা বারবার বলে আসছি।'
তবে তিনি আরও বলেন যে, মার্কিন সেনারা আত্মরক্ষার্থে কাজ করে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড গণমাধ্যমকে জানায়, গত শনিবার ইয়েমেনের হুতি নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে চারটি ছোট নৌকা নিয়ে মেয়ার্স্ক হাংঝুর জাহাজে হামলা ও জাহাজটি আটকের চেষ্টা করা হয়।
সেই জাহাজ থেকে সাহায্যের আবেদন জানানো হলে সেই অঞ্চলে থাকা মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস আইজেন হাওয়ার ও ইউএসএস গ্রেভলি হুতিদের নৌকা লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।
সেন্ট্রাল কমান্ডের বার্তায় বলা হয়, আত্মরক্ষার্থে মার্কিন সেনারা হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোড়ে। এতে হুতিদের চার নৌকার মধ্যে তিনটি ডুবে যায়। অপর নৌকাটি সেই এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মার্কিন বাহিনীর কারো কোনো ক্ষতি হয়নি।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংঘাত ছড়িয়ে পড়লে কী করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, 'হুতি ও আমাদের মিত্রদের পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমরা হুতিদের হুমকিকে গুরুত্বে সঙ্গে নিয়েছি। আমরা সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেব।'
| লোহিত সাগরে মার্কিন বাহিনী ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের তিনটি ছোট নৌকা ডুবিয়ে দেওয়ার পর হোয়াইট হাউস বলেছে, তারা মধ্যপ্রাচ্যে 'বড় পরিসরে সংঘাত চায় না'। |
২০২৩ গেল যুদ্ধ-বিগ্রহে, ২০২৪ সাল কি আরও খারাপ হতে যাচ্ছে | কোভিড পরবর্তী বিশ্ব বেশ ক্লান্ত। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, তহবিলের স্বল্পতা থেকে শুরু করে চলমান যুদ্ধ এবং বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক অস্থিরতায় বেশ উত্তেজনাপূর্ণ কেটেছে ২০২৩ সাল। তবে বছরটি আরও খারাপের দিকে মোড় নিতে পারতো। কিন্তু একটি ব্রেকিং পয়েন্টে পৌঁছানোর আগেই ২০২৪ সাল এসে হাজির। যেখানে অপেক্ষা করছে বড় কিছু সঙ্কট।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ এখনো সরাসরি অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকায় সংঘর্ষটি বড় আকারে ছড়িয়ে পড়েনি, যেমনটা অনেকেই ধারণা করেছিলেন।
যদিও ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ'র সঙ্গে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে প্রায়ই গোলা বিনিময় হচ্ছে। তবে ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণ প্রতিরোধের জন্য গঠিত এই গোষ্ঠীটি ২০ হাজার গাজাবাসী মারা যাওয়ার পরও পুরোপুরিভাবে যুদ্ধে জড়ায়নি। এর পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ থাকতে পারে। যেমন, বছরের পর বছর সিরিয়া এবং অন্যান্য জায়গায় সংঘর্ষে জড়িয়ে থাকার কারণে হিজবুল্লাহ বেশ ক্লান্ত। এ ছাড়া, ইরান থেকে কম অর্থায়ন, ইসরায়েলের সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ের ফলে লেবাননে ভারী বোমা পড়ার আশঙ্কাসহ নানা কারণ রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হিজবুল্লাহর প্রধান সমর্থক ইরান ইসরায়েলের সঙ্গে সরাসরি বড় লড়াইয়ে নামতে এখনো আগ্রহী নয়। কেননা ইরান নিজস্ব কিছু অভ্যন্তরীণ সমস্যা এবং অর্থনৈতিক সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া, ইরান এখনো তাদের প্রধান সামরিক নেতা কাশেম সোলাইমানিকে হারানোর ক্ষত কাটিয়ে উঠতে পারেনি। অন্যদিকে, ইরান পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে এসেছে এবং দ্রুত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে। যদিও এর আগে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণ করবে না বলে জানিয়েছিল। তবে মার্কিন বিশ্লেষকরা ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ক্ষমতা এবং সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।
২০২৪ সালে ইরানের পারমাণবিক বোমার সম্ভাব্য বিকাশ এই অঞ্চলের পরবর্তী সঙ্কটে পরিণত হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, ইসরায়েল বা যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়, সেক্ষেত্রে তাদের জবাব দেওয়ার জন্য হিজবুল্লাহকে আপাতত সংরক্ষিত করে রাখা হচ্ছে।
অপরদিকে, মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য রাষ্ট্রগুলো ফিলিস্তিনের এই পরিস্থিতিতে প্রায়ই ক্ষোভ প্রকাশ করছে, কিন্তু যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তারা পরিস্থিতিটিকে সক্রিয়ভাবে সম্বোধনের চেয়ে স্থিতিশীলতা, ইরানের বিরুদ্ধে ঐক্য এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা বজায় রাখার বিষয়ে বেশি উদ্বিগ্ন।
২০২৪ সালে আরেকটি প্রধান উদ্বেগজনক সিদ্ধান্ত আসতে পারে ইসরায়েলের কাছ থেকে। তাদের অভ্যন্তরীণ ঐক্য এবং মার্কিন সমর্থনের ওপর ভিত্তি করে হিজবুল্লাহকে আক্রমণের আশঙ্কা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে এতে উভয় পক্ষের প্রচণ্ড ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি বেসামরিক নিহতের সংখ্যা হবে আকাশচুম্বী। এই সংঘর্ষের সম্ভাবনা ২০০৬ সালের ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের পর থেকেই তৈরি হচ্ছে। তবে ঘটনাটি এখন ঘটার দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে।
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা সত্ত্বেও, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন এখনো মূল বৈশ্বিক নিরাপত্তা সমস্যার একটি। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিলম্বিত সাহায্য ইউক্রেনের মনোবলে বেশ আঘাত হেনেছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষায় ন্যাটোর যথেষ্ট বিনিয়োগ সত্ত্বেও এটি প্রয়োজনীয় ফলাফল দেখাতে পারেনি।
ইউক্রেন আরও ৫ লাখ সেনা মোতায়েনের কথা ভাবছে। অন্যদিকে, রাশিয়া আত্মঘাতী মিশনের জন্য সু-প্রশিক্ষিত অপরাধীদেরও নিয়োগ দিচ্ছে। হতাহতের ক্ষেত্রে মস্কোর সহনশীলতা এবং এর দৃঢ় সিদ্ধান্ত গ্রহণ যুদ্ধক্ষেত্রে এর পুনরুত্থানকে শক্তিশালী করছে।
পশ্চিমা সমর্থন এবং অর্থায়ন হ্রাস পেতে শুরু করায় এটা স্পষ্ট যে, কিয়েভ আসন্ন শীতকালে একটি জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে। পশ্চিমা সহায়তা ছাড়া তারা বেশিদিন প্রতিরোধ করতে পারবে না। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপতি জেলেনস্কির সঙ্গে তার সামরিক প্রধানের সম্পর্ক প্রশাসনের মধ্যে গভীর বিভাজন প্রকাশ করছে। অতীতের ব্যর্থতার জন্য তারা একে অপরকে দোষারোপ করছে।
২০২৩ সালের যুদ্ধের সঙ্কটগুলো ২০২৪ সালে আরও গভীর হতে যাচ্ছে। পশ্চিমা সহায়তা হ্রাস, ইউক্রেনের পতন ত্বরান্বিত করবে কি না, তা পরের বছরই প্রকাশ পাবে। তবে এই যুদ্ধের ফলাফলের প্রভাব ইউরোপীয় নিরাপত্তার জন্য অপরিসীম। রাশিয়া ইউক্রেন দখল করে নিলে তারা ন্যাটোর সীমানার কাছাকাছি চলে আসবে। যা নতুন কোনো সংঘাতের জন্ম দেবে কি না, তা দেখা এখন সময়ের দাবি।
তবে স্বস্তির বিষয় এই যে, চীন এখনো তাইওয়ান আক্রমণ করেনি। যদিও ফিলিপাইনের কাছাকাছি এবং দক্ষিণ চীন সাগরে তারা সামরিক মহড়া চলমান রেখেছে। চীন মূলত নিজের দেশের ভেতর কিছু সঙ্কটের সম্মুখীন। বার্ধক্যজনিত জনসংখ্যা এবং সঙ্কুচিত কর্মশক্তির কারণে বেইজিং একটি ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাগত সঙ্কটের মুখোমুখি। যা সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটাতে পারে। শি জিনপিংয়ের 'চীনা স্বপ্ন' চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলে দেশটি আগ্রাসী বৈদেশিক নীতির দিকে ঝুঁকতে পারে।
তবে তাইওয়ানের আসন্ন নির্বাচনে বাইডেন মার্কিন সেনা পাঠানোসহ এটিকে সমর্থন দেবে বলে প্রকাশ্যে জানিয়েছে। যা তাইওয়ানের ভবিষ্যতকে আরও অনিশ্চিত করে তুলতে পারে। সেক্ষেত্রে আগামী বছর চীনের সঙ্গে তাইওয়ানের সমস্যাটি আরও প্রকট আকার ধারণ করতে পারে।
বিশ্বের পারমাণবিক শক্তিগুলোর সম্পর্ক এখন সাপে-নেউলে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ইসরায়েল, ভারত, পাকিস্তান এবং উত্তর কোরিয়া প্রত্যেকের পরিস্থিতিই উত্তেজনাপূর্ণ।
ভারতে কর্তৃত্ববাদী প্রবণতা বৃদ্ধি, তার পাশেই পাকিস্তান ইসলামবাদী বিদ্রোহ এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মুখোমুখি হয়ে আছে। অন্যদিকে, পূর্ব ইউরোপে আক্রমণের জন্য উত্তর কোরিয়া মস্কোতে পুরোনো কামান সরবরাহ করছে। পাশাপাশি তারা জাপানের ওপরও রকেট নিক্ষেপের মতো কর্মকাণ্ড করছে। যা অঞ্চলটিতে অস্বস্তি বাড়াচ্ছে।
বিশ্ব গত কয়েক দশকের তুলনায় বেশ অনিশ্চিত অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তা সত্ত্বেও, আশার কথা হলো যে- সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিগুলো এ বছর উন্মোচিত হয়নি। অদূর ভবিষ্যতেও যেন না হয়, সেটাই প্রত্যাশা।
তথ্যসূত্র: সিএনএন
গ্রন্থনা: আহমেদ বিন কাদের অনি
| কোভিড পরবর্তী বিশ্ব বেশ ক্লান্ত। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, তহবিলের স্বল্পতা থেকে শুরু করে চলমান যুদ্ধ এবং বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক অস্থিরতায় বেশ উত্তেজনাপূর্ণ কেটেছে ২০২৩ সাল। তবে বছরটি আরও খারাপের দিকে মোড় নিতে পারতো। কিন্তু একটি ব্রেকিং পয়েন্টে পৌঁছানোর আগেই ২০২৪ সাল এসে হাজির। যেখানে অপেক্ষা করছে বড় কিছু সঙ্কট। |
২০২৩: বিশ্ব হারিয়েছে যাদের | ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বারলুসকোনি, রক সম্রাজ্ঞী টিনা টার্নার, রাশিয়ার ভাড়াটে ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনসহ ২০২৩ সালে যাদের মৃত্যুতে বিশ্বব্যাপী শোক ও আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে তাদের নিয়ে এই লেখা।
৭ জানুয়ারি: রাসেল ব্যাংকস (৮২), প্রথিতযশা মার্কিন ঔপন্যাসিক। লেখায় তুলে এনেছেন প্রান্তিক মানুষের জীবন।
১০ জানুয়ারি: জেফ বেক (৭৮), ব্রিটেনের প্রখ্যাত গিটারিস্ট। ১৯৬০ এর দশকে 'ইয়ার্ডবার্ডস' এ বাজাতেন।
১০ জানুয়ারি: কার্ডিনাল জর্জ পেল (৮১), অস্ট্রেলিয়ান ধর্মযাজক। শিশুদের যৌন নিপীড়নের দায়ে কারাদণ্ড, পরে অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস।
১২ জানুয়ারি: লিসা মেরি প্রিসলি (৫৪), সঙ্গীতশিল্পী এলভিস প্রিসলির একমাত্র কন্যা। ওজন হ্রাসের জন্য সার্জারি করতে গিয়ে প্রতিক্রিয়ায় মৃত্যু।
১৬ জানুয়ারি: গিনা লোলোব্রিগিডা (৯৫), ইতালিয়ান মহানায়িকা, হলিউডের স্বর্ণযুগের প্রতিনিধিদের একজন।
১৭ জানুয়ারি: লুসিল র্যান্ডন (১১৮), ফ্রেঞ্চ যাজিকা। পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি।
১৮ জানুয়ারি: ডেভিড ক্রসবি (৮১), আমেরিকান ফোক-রকের পথিকৃৎ।
৩ ফেব্রুয়ারি: প্যাকো রাবানে (৮৮), স্প্যানিশ ফ্যাশন ডিজাইনার, অভিনব নকশার জন্য খ্যাত।
৫ ফেব্রুয়ারি: পারভেজ মোশাররফ (৭৯), পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রপতি, সামরিক শাসক
৮ ফেব্রুয়ারি: বার্ট রাকারাক (৯৪), কিংবদন্তী পপ সঙ্গীতজ্ঞ, 'ওয়াক অন বাই' ও 'রেইনড্রপস কিপ ফলিং' এর মতো গানের স্রষ্টা
১০ ফেব্রুয়ারি: কার্লোস সরা (৯১), খ্যাতিমান স্প্যানিশ পরিচালক, ফ্রাঙ্কোর একনায়কত্বের সমালোচক
১৫ ফেব্রুয়ারি: র্যাকুয়েল ওয়েলক (৮২), মার্কিন অভিনেত্রী।
৩ মার্চ: কেনযাবুরো ওয়ি (৮৮), নোবেলজয়ী জাপানি সাহিত্যিক।
৯ মার্চ: চাইম টোপোল (৮৭), ইসরায়েলি অভিনেতা। 'ফিডলার অন দ্য রুফ' সিনেমায় গোয়ালার চরিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি পান।
১২ মার্চ: ডিক ফসবারি (৭৬), কিংবদন্তী অ্যাথলেট। 'ফসবেরি ফ্লপ' এর প্রচলন করেন। সিজর কিক এর বদলে জনপ্রিয়তা পায় এই ভঙ্গিমা।
২১ মার্চ: ক্লডে লরিয়াস (৯১), ফরাসি জলবায়ু বিশেষজ্ঞ। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন নিয়ে তার গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে।
২৮ মার্চ: রিউকি সাকামোটো (৭১), জাপানি সুরকার, ইলেকট্রনিক মিউজিকের জন্য খ্যাত।
১৩ এপ্রিল: মেরি কুয়ান্ট (৯৩), প্রথাবিরোধী ব্রিটিশ ফ্যাশন ডিজাইনার, মিনিস্কার্টের প্রচলনকারী।
১৬ এপ্রিল: আহমাদ জামাল (৯২), মার্কিন সঙ্গীতজ্ঞ ও পিয়ানিস্ট৷ ৮০টির মতো অ্যালবাম রয়েছে তার।
১৯ এপ্রিল: মুনবিন (২৫), কে-পপ মেগাস্টার। 'অ্যাস্ট্রো', ব্যান্ডের সদস্য ছিলেন। ধারণা করা যায়, আত্মহত্যা করেছেন তিনি।
২২ এপ্রিল: ব্যারি হাম্ফ্রিস (৮৯), অস্ট্রেলিয় কৌতুক অভিনয়শিল্পী।
২৫ এপ্রিল: হ্যারি বেলাফোন্টে (৯৬), কিংবদন্তী মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী ও অ্যাক্টিভিস্ট।
২৭ এপ্রিল: জেরি স্প্রিনজার (৭৯), জনপ্রিয় মার্কিন টকশো উপস্থাপক।
১৯ মে: মার্টিন অ্যামিস (৭৩), আধুনিক ব্রিটিশ সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব।
২৪ মে: টিনা টার্নার (৮৩), কিংবদন্তি মার্কিন রক আইকন, মঞ্চ পরিবেশনায় অনন্যা।
৫ জুন: অ্যাসট্রাড গিলবার্টো (৮৩), ব্রাজিলিয়ান 'গার্ল ফর ইপানেমা' শিল্পী।
৫ জুন: রবার্ট অ্যানসেন (৭৯), মার্কিন ডবল এজেন্ট, রাশিয়ার কাছে আমেরিকার অতি গোপনীয় কিছু তথ্য ফাঁস করেন তিনি।
৬ জুন: ফ্রাঙ্কোইস গিলোট (১০১), ফরাসি শিল্পী। পাবলো পিকাসোর স্বপ্নমানসী ও দীর্ঘদিনের সঙ্গী।
১০ জুন: টেড ক্যাকজিনস্কি (৮১) দুদশকের বেশি সময় ধরে আমেরিকায় ভীতি ছড়ানো এক বোমাবাজ।
১২ জুন: সিলভিও বারলুসকোনি (৮৬), ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী, মিডিয়া মোগল।
১৩ জুন: করম্যাক ম্যাককার্থি (৮৯), ঔপন্যাসিক। 'দ্য রোড' ও 'নো কান্ট্রি ফর ওল্ড মেন' এর মতো জনপ্রিয় বইয়ের লেখক।
১৫ জুন: গ্লেন্ডা জ্যাকসন (৮৭), অস্কারজয়ী ব্রিটিশ অভিনেত্রী ও রাজনীতিবিদ।
১ জুলাই: ভিক্টোরিয়া অ্যামেলিনা (৩৭), ইউক্রেনিয়ান সাহিত্যের উদীয়মান তারকা। রাশিয়ান মিসাইল আক্রমণে আহত হয়ে মৃত্যু।
১১ জুলাই: মিলন কুন্ডেরা (৯৪), চেক-ফ্রেঞ্চ ঔপন্যাসিক। চেকোস্লোভাকিয়ার কমিউনিস্ট শাসনের সমালোচক। 'দ্য আনবেয়ারেবল লাইটনেস অব বিং' উপন্যাসের এর জন্য বিখ্যাত।
১৬ জুলাই: জেন বার্কিন (৭৬), ব্রিটিশ বংশোদ্ভুত সঙ্গীতশিল্পী ও অভিনেত্রী। ফরাসি সঙ্গীতশিল্পী ও গীতিকার সার্জ গেইন্সবার্গের সঙ্গে তার প্রেম তুমুল আলোচিত ও চর্চিত।
২১ জুলাই: টনি বেনেট (৯৬), আমেরিকার 'ক্রুনার'দের সর্বশেষ প্রতিনিধি।
২৬ জুলাই: সিনফাদ ও কনোর (৫৬), কিংবদন্তী আইরিশ পপ সঙ্গীতশিল্পী। 'নাথিং কম্পেয়ারস টু ইউ' গানের জন্য খ্যাত।
৩০ জুলাই: পল রুবেন্স (৭০), মার্কিন কৌতুক অভিনেতা।
৭ আগস্ট: উইলিয়াম ফ্রেডকিন (৮৭), মার্কিন চিত্রপরিচালক। 'দি একসরসিস্ট' ও 'দি ফ্রেঞ্চ কানেকশন' এর জন্য খ্যাত।
৯ আগস্ট: সিক্সটো রদ্রিগেজ (৮১), কাল্ট ফিগার৷ অস্কারজয়ী তথ্যচিত্র 'সার্চিং ফর সুগার ম্যান' তার ওপর ভিত্তি করে বানানো।
১৫ আগস্ট: বিন্দেশ্বর পাঠক (৮০), ভারতীয় সমাজ সংস্করক ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার সংস্কারে বিপ্লবী ভূমিকা রাখা ব্যক্তিত্ব।
২৩ আগস্ট: ইয়েভগেনি প্রিগোশিন (৬২), রাশিয়ান আধা-সামরিক বাহিনী ওয়াগনার এর প্রধান। মস্কোর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার পর রহস্যজনক বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু।
৩০ আগস্ট: মোহামেদ আল-ফায়েদ (৯২), মিশরিয় ধনকুবের।
২ সেপ্টেম্বর: সালিফ কেইতা (৭৬), মালির ফুটবলার। মার্সেইলি ও সেন্ট-এতিয়ানে ক্লাবেও খেলেছেন।
৯ সেপ্টেম্বর: মাঙ্গোসুথু বুঠেলেজি (৯৫), জুলু যুবরাজ, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথিতযশা রাজনীতিবিদ।
১০ সেপ্টেম্বর: আয়ান উইলমুট (৭৯), ভ্রুণবিদ্যার পথিকৃৎ। ১৯৯৬ এ ক্লোন ভেড়া ডলি-র জন্মের নেপথ্য কারিগর।
১৫ সেপ্টেম্বর: ফার্নান্দো বোটেরো (৯১), খ্যাতিমান কলম্বিয়ান ভাস্কর।
২৫ সেপ্টেম্বর: মাতিও মেসিনা দিনারো (৬১), কুখ্যাত সিসিলিয়ান মাফিয়া বস। কারাগারে বন্দিদশায় মৃত্যু।
২৭ সেপ্টেম্বর: মাইকেল গ্যাম্বন (৮২), ব্রিটিশ অভিনেতা, হ্যারি পটার সিরিজের 'আলবাস ডাম্বলডোর' চরিত্রে অভিনয়সূত্রে বিশ্বব্যাপী পরিচিত৷
২৯ সেপ্টেম্বর: ডায়ানে ফেইন্সটাইন (৯০), 'লায়োনেস অব দ্য ইউএস সিনেট' বা 'যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের সিংহী' বলে পরিচিত।
১৩ অক্টোবর: হারবার্ট রিভস (৯১), কানাডিয়-ফরাসি জ্যেতিপদার্থবিদ। মহাকাশবিজ্ঞানের জনপ্রিয়করণে প্রভূত অবদান রেখেছেন৷
১৩ অক্টোবর: লুইস গ্লাক (৮০), আমেরিকান কবি। নোবেল ও পুলিৎজার পুরস্কার জয়ী।
১৫ অক্টোবর: গিসেলে খৌরি (৬৭), আরব বিশ্বের সাংবাদিকতায় এক মহীরুহ।
২১ অক্টোবর: ববি চার্লটন (৮৬), ব্রিটিশ ফুটবল তারকা। বিশ্বকাপজয়ী, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এক কিংবদন্তি।
২৭ অক্টোবর: লি কেকিয়াং (৬৮), চীনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের ক্যাবিনেটে প্রথম দুই মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী।
২৮ অক্টোবর: ম্যাথিউ পেরি (৫৪), মার্কিন তারকা। জনপ্রিয় সিটকম 'ফ্রেন্ডস' এ 'চ্যান্ডলার বিং' চরিত্রে অভিনয় করে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি পান।
১৯ নভেম্বর: রোসালিন কার্টার (৯৬), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফার্স্ট লেডি, জিমি কার্টারের স্ত্রী।
২৯ নভেম্বর: হেনরি কিসিঞ্জার (১০০), মার্কিন কূটনীতিক। যুদ্ধবাজ হিসেবে সমালোচিত কিসিঞ্জার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পৃথিবীর রাজনৈতিক সমীকরণে গুরুত্বপূর্ণ এক প্রভাবক ছিলেন।
৩০ নভেম্বর: শেন ম্যাকগোয়ান (৬৫), আইরিশ সঙ্গীতশিল্পী, গীতিকার। কেলটিক ফোক 'পাঙ্ক ব্যান্ড দ্য পগুস' এ গাইতেন।
১ ডিসেম্বর: সান্ড্রা ডে ও কনোর (৯৩), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালতের প্রথম নারী বিচারক। ১৯৮১ সালে রোনাল্ড রিগানের সরকার তাকে নিয়োগ করেছিল।
৮ ডিসেম্বর: রায়ান ও নিল (৮২) মার্কিন হার্টথ্রব অভিনেতা। 'লাভ স্টোরি' ও 'ব্যারি লিন্ডন' তাকে খ্যাতি এনে দেয়।
১১ ডিসেম্বর: বুলেলওয়া কুতুকানা ওরফে জাহারা (৩৬), দক্ষিণ আফ্রিকান আফ্রো-পপ সেনসেশন। যকৃতের সিরোসিসে প্রয়াত।
১৪ ডিসেম্বর: বেটি কুপার হার্নেস (৯৬), আমেরিকান রাজনীতিবিদ। মিসৌরির সাবেক ফার্স্ট লেডি (১৯৬৫-৭৩), মিসৌরির হাউস অব রিপ্রেজেন্টিটিভস এর সদস্য (১৯৭৯-৮৯)।
১৪ ডিসেম্বর: জর্জ ম্যাকগিনিস (৭৩), আমেরিকান হল অব ফেম বাস্কেটবল খেলোয়াড়।
২৪ ডিসেম্বর: ডেভিড লিল্যান্ড (৮২), ব্রিটিশ চলচ্চিত্র পরিচালক (উইশ ইউ অয়্যার হেয়ার, ভার্জিন টেরিটরি) ও চিত্রনাট্যকার (মোনা লিসা)। বাফটা পুরস্কার বিজয়ী (১৯৮৮)।
২৯ ডিসেম্বর: স্যার মাইকেল হার্ডি বয়েস (৯২), নিউজিল্যান্ডের আইনজীবী, বিচারক ও ভাইস-রিগাল রিপ্রেসেন্টিটিভ। উচ্চ আদালতে বিচারক (১৯৮০-৮৯), গভর্নর জেনারেল (১৯৯৬-২০০১), প্রিভি কাউন্সিলর (১৯৮৯-২০২৩)।
৩০ ডিসেম্বর: খাচিম কার্মোকভ (৮২), রাশিয়ান রাজনীতিবিদ, সংসদ সদস্য (১৯৯৩-৯৫), সিনেটর (২০০১-২০০৯)।
গ্রন্থনা: মাহমুদ নেওয়াজ জয়
| ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বারলুসকোনি, রক সম্রাজ্ঞী টিনা টার্নার, রাশিয়ার ভাড়াটে ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনসহ ২০২৩ সালে যাদের মৃত্যুতে বিশ্বব্যাপী শোক ও আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে তাদের নিয়ে এই লেখা। |
রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে ইউক্রেনের হামলায় ২০ জন নিহতের দাবি | রাশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলগরদ প্রদেশের রাজধানী বেলগরদ শহরে প্রতিবেশী ইউক্রেনের হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুই শিশু আছে।
গতকাল শনিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানায়।
সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়, বেলগরদ প্রদেশটি ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী হওয়ায় ইউক্রেন মাঝেমধ্যে এখানে হামলা চালায়।
'কিয়েভ সরকার বেলগরদ শহরে নির্বিচারে হামলা চালিয়েছে' উল্লেখ করে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক টেলিগ্রাম পোস্টে বলা হয়, হামলায় নিষিদ্ধ গুচ্ছ বোমা ব্যবহারের পাশাপাশি চেক প্রজাতন্ত্রের তৈরি ভাম্পায়ার রকেট ছোড়া হয়েছে।
এই অপরাধের 'বদলা' নেওয়ার কথাও পোস্টে জানানো হয়।
হামলার ঠিক আগে বেলগরদ প্রদেশজুড়ে সাইরেন বাজানো হয় এবং প্রাদেশিক গভর্নর ভিয়াচেস্লাভ গ্লাদকভ সবাইকে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নেওয়ার অনুরোধ করেন।
রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি জানায়, আজ রোববার ভোরে গভর্নর গ্লাদকভ টেলিগ্রাম পোস্টে বলেন, গতকালের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২ জন হয়েছে।
এই হামলায় ১০৯ জন আহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
গভর্নরের বরাত দিয়ে আরটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইউক্রেনের হামলায় শহরটির অবকাঠামোর অনেক ক্ষতি হয়েছে। উদ্ধারকাজে সহায়তার জন্য অন্যান্য শহর থেকে সরকারি কর্মীদের আনা হয়েছে।
এতে বলা হয়—হামলায় ১০০-র বেশি গাড়ি, বেশ কয়েকটি দোকান, ৩০টি অ্যাপার্টমেন্ট, পানি ও গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
| রাশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলগরদ প্রদেশের রাজধানী বেলগরদ শহরে প্রতিবেশী ইউক্রেনের হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুই শিশু আছে। |
গাজায় ইসরায়েলি হামলা চলছেই, নিহত ছাড়াল সাড়ে ২১ হাজার | গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এ পর্যন্ত সাড়ে ২১ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় ২১ হাজার ৫০৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৫৫ হাজার ৯১৫ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
| গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এ পর্যন্ত সাড়ে ২১ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। |
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকার মামলা | গাজায় 'গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ডে' জড়িত থাকার অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
এএফপি জানায়, জেনোসাইড কনভেনশনের অধীনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগের বিষয়ে কার্যক্রম শুরু করেছে আইসিজে।
মামলার পর দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্সি এক বিবৃতিতে জানায়, গণহত্যা প্রতিরোধে দক্ষিণ আফ্রিকার অবস্থান দৃঢ়। দেশটি গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলা, নির্বিচারে শক্তি প্রয়োগ, বাসিন্দাদের জোরপূর্বক স্থানান্তরিত করা সর্বোপরি বেসামরিক নাগরিকদের দুর্দশায় গভীরভাবে উদ্বেগ জানায়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, 'ইসরায়েল গাজায় আন্তর্জাতিক অপরাধ, যেমন—মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ, এর পাশাপাশি গণহত্যা বা এ সম্পর্কিত অপরাধের সীমারেখা লঙ্ঘন করেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।'
৮৪ পৃষ্ঠার ওই নথিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের এই আচরণ গণহত্যামূলক। কারণ তারা ফিলিস্তিনি জাতির একটি উল্লেখযোগ্য অংশকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্য নিয়েই হামলা চালাচ্ছে।
আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে শুনানির জন্য আইসিজে-কে অনুরোধ জানিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এছাড়া গাজায় ইসরায়েলের সমস্ত সামরিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়াসহ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিতেও আইসিজে-কে আহ্বান জানায় দেশটি।
এদিকে গণহত্যার অভিযোগকে 'ভিত্তিহীন' দাবি করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, 'ইসরায়েল ঘৃণাভরে দক্ষিণ আফ্রিকার এই অপবাদ ছড়ানোকে প্রত্যাখ্যান করে।'
হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ২১ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যার বেশিরভাগই শিশু ও নারী। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন কয়েক লাখ ফিলিস্তিনি।
| গাজায় 'গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ডে' জড়িত থাকার অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। |
ফিলিস্তিনের শিশু: ফুলগুলো কোথায় গেল? | হাজার বছর ধরে প্রভু যিশুর জন্মদিনে শিশুদের জন্য উপহারের ঝোলা কাঁধে ছুটে বেড়ানো সান্তাবুড়ো এমন বিপদে আগে পড়েননি কখনো। বরাবরের মতো এবারও হরিণটানা স্লেজে চড়ে বড়দিনের আগের রাতে পুরো দুনিয়া ঘুরে বাচ্চাদের ঘরের দুয়ারে উপহার পৌঁছে দিলেন তিনি। শেষমেষ আসলেন ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা হামলায় বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায়।
কিন্তু রক্তস্নাত এই জনপদে পা রেখে বিমূঢ় সান্তা দেখতে পেলেন, তার উপহার বুঝে নেওয়ার জন্য কোনো শিশু বেঁচে নেই সেখানে। বরং, ভেঙে পড়া দালানকোঠার ফাঁকফোকরে আটকে থাকা নিহত শিশুদের কয়েকটি ধূসর পুতুল আচমকা তাকেই প্রশ্ন করে বসল—'আমাদের কিছু শিশু উপহার দিতে পারো?'
গোটা পৃথিবীর ভেতর সম্ভবত গাজাই এখন একমাত্র জনপদ, যেখানে মাতৃগর্ভেই হত্যার শিকার হচ্ছে শিশুরা। অথবা জন্মের পর পর মরছে গুলি-বোমার আঘাতে। যারা এখনো মরেনি, তাদের মারতেও কোনো আয়োজন বাকি রাখেনি ইসরায়েল। হাসপাতাল-স্কুলসহ অপেক্ষাকৃত নিরাপদ বলে বিবেচিত শরণার্থী শিবিরগুলোতেও চলেছে বাছবিচারহীন হামলা। অকার্যকর করে দেওয়া হয়েছে হাসপাতালের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা। বন্ধ করে রাখা হয়েছে অবরুদ্ধ উপত্যকায় খাদ্য-পানীয় প্রবেশের সব উপায়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বোমা ও গোলাবর্ষণে ২০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্থিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্তত আট হাজার শিশু। এ ছাড়াও, অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনা ও অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের হাতে আরও অন্তত ৩০০ ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
গাজায় চলমান এই গণহত্যা এবার বিশ্বব্যাপী বড়দিন উদযাপনেও দুঃখ ও হতাশার ছায়া ফেলেছে। ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ও গণত্যার প্রতিবাদে আগেই বড়দিনের উৎসব বাতিল করেছে যিশুর জন্মস্থান অধিকৃত পশ্চিম তীরের বেথেলহামের গির্জাগুলো।
এর পাশাপাশি পশ্চিমা গণমাধ্যমের বর্ণবাদী পক্ষপাত ও সামাজিক মাধ্যমের অ্যারগরিদমে আড়াল হওয়া এই গণহত্যার বাস্তবতা এবং নিজ দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাসীনদের চোখ রাঙানি এড়িয়ে ইসরাইলবিরোধী প্রতিরোধের অনন্য নজির গড়ে যাচ্ছেন অনেক শুভবোধসম্পন্ন ইহুদি। খণ্ড খণ্ডভাবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে প্রতিবাদ। তাতে শামিল হচ্ছেন এই গণহত্যায় প্রত্যক্ষ সমর্থন দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন।
গত ২২ ডিসেম্বর মানবাধিকার সংগঠন আমেরিকান হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের (এএইচআরসি) এক বিবৃতিতে অবিলম্বে এই গণহত্যা বন্ধ ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, 'যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থন নিয়ে গাজার ২২ লাখ মানুষ যখন ইসরায়েলি গণহত্যার মুখোমুখি হচ্ছে, তখন বড়দিন উদযাপনের বিষয়টি অসংবেদনশীল।'
গাজাকে এই মুহূর্তে পৃথিবীর 'সবচেয়ে বিধ্বস্ত' এলাকা হিসেবে অভিহিত করে বিবৃতিতে সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক ইমাদ হামাদ বলেন, 'আমরা আশা হারাতে পারি না। গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং যিশু খ্রিষ্টের জন্মভূমিতে শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য চাপ অব্যাহত রাখতে সব শুভবোধসম্পন্ন মানুষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।'
ওয়েবসাইটে এই বিবৃতির সঙ্গে যে ইলাস্ট্রেশন ব্যবহার করেছে এএইচআরসি, তাতে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে। দেখা গেছে, বোমায় বিদীর্ণ এক ভবনের ভেতর নতমুখে দাঁড়িয়ে আছেন লাল পোশাকের সান্তাবুড়ো। শিশুদের জন্য আনা উপহার ভরা ঝোলাটি নিচে ফেলে রাখা। পাশে লেখা, 'হোয়্যার আর দ্য কিডস?'
ভারতের গণমাধ্যম টাইমস অব ইনডিয়া'য় প্রকাশিত এমন আরেকটি কার্টুনে দেখা যায়, ধ্বংসস্তূপের ভেতর পড়ে থাকা একটি টেডিবিয়ার সান্তা ক্লজকে বলছে, 'ক্যান ইউ গিফট আস সাম কিডস?'
এদিকে চলমান যুদ্ধের কারণে যিশুর জন্মস্থান বলে পরিচিত বেথেলহামে বড়দিন উদযাপনের কোনো আড়ম্বর নেই বলে জানিয়েছে আল জাজিরা। রোববার '"নো জয় ইন আওয়ার হার্টস": বেথেলহেমস ক্রিশ্চিয়ানস ফেস হার্টব্রেক অ্যাট ক্রিসমাস' শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, 'বড়দিন উদযাপন বাতিলের এই সিদ্ধান্তটি হালকাভাবে নেওয়া হয়নি। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ এবং সম্পূর্ণ অবরোধের মুখোমুখি ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশের জন্য এখানকার গির্জা এবং বেথেলহামবাসী ঐক্যবদ্ধ।'
গাজার ধ্বংসস্তূপের ভেতর সান্তা। ছবি: মিডলইস্ট আই থেকে নেওয়া
২২ লাখ জনগোষ্ঠীর গাজা উপত্যকায় প্রায় দুই হাজার খ্রিষ্টানদের বাস। ব্যতিক্রম বাদে প্রায় প্রতি বছর বড়দিনে বেথেলহামে তীর্থযাত্রা করার সুযোগ পেতেন তারা। শহরটির অবস্থান পশ্চিম তীরের জেরুজালেম থেকে ছয় মাইল দক্ষিণে। এখানেই আছে খ্রিষ্টধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র চার্চ অব দ্য ন্যাটিভিটি।
আল জাজিজার প্রতিবেদনে বলা হয়, এই যুদ্ধ বেথলেহামের পর্যটনকেও স্থবির করে তুলেছে, যা এর অর্থনীতির ভিত্তি। ক্রিসমাসের সময় সারা বিশ্ব থেকে দর্শনার্থীরা বেথেলহামের বাজারগুলোতে ভিড় করেন। এ বছর এখানকার রাস্তাগুলো ফাঁকা। আর বেথলেহামের বাসিন্দাদের মধ্যেও কোনো উৎসবের আমেজ নেই। কারণ তাদের অনেকের স্বজন গাজার মৃত্যুকূপে আটকা পড়েছেন।
বেথেলহামের ৮৭ বছর বয়সী খ্রিষ্টান নারী উম শাদির দুই ভাইবোন গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। আরেকজন বিমান হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, 'এই গণহত্যার মধ্যে আমরা কীভাবে ক্রিসমাস উদযাপন করব? যেখানে গাজার বাসিন্দারা এক বেলা খাবার পেতে লড়াই করছে।'
আবার বেথলেহেমের লুথেরান ইভানজেলিকাল গির্জায় এবাং যিশুর জন্মদৃশ্যটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে অন্যভাবে। সেখানে খড়ভর্তি খাটের পরিবর্তে সদ্য জন্ম নেওয়া প্রভু যিশু শুয়ে আছেন ধ্বংসস্তূপের ভেতর। তার গায়ে জড়ানো ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ সংগ্রামের প্রতীক হয়ে ওঠা বিখ্যাত কালো-সাদা কেফিয়া।
লুথেরান গির্জার যাজক মুনথার আইজ্যাক দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, 'ফিলিস্তিনি শিশুদের জন্য এটাই বড়দিনের বাস্তবতা। যিশু যদি এখন জন্ম নিতেন তাহলে তিনি গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচেই থাকতেন।'
ফিলিস্তিনি শিশুদের জন্য যে 'ঘুমপাড়ানি গান' লিখেছিলেন উর্দু কবি ফয়েজ আহমদ ফয়েজ, সেখানে মায়ের কোলে শুয়ে থাকা বাচ্চার কপালে চুমু দেওয়ার জন্য চাঁদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। কারণ চাঁদ ব্যস্ত ছিল ওই মৃত্যু উপত্যকার বাসিন্দাদের সমাহিত করার কাজে।
আমেরিকান হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের (এএইচআরসি) বিবৃতিতে ব্যবহার করা ইলাস্ট্রেশন। ছবি: সংগৃহীত
তাই সেখানকার বেঁচে থাকা শিশুদের সান্ত্বনা দিতে ফয়েজকে বলতে শোনা যায়, 'না বাছা, কেঁদো না!/তোমার বাসভূমে/মৃতদের গোসল দিয়েছে সূর্য/চাঁদ দিয়েছে কবর।'
এরও অনেক আগে ফিলিস্তিনি জাতিসত্তার কবি মাহমুদ দারবিশ লিখে যান, 'আজকের দিনটি আগামী দিনের থেকে হয়তো ভালো,/কেবল মৃত্যুগুলোই আজ নতুন/প্রতিদিনই জন্ম নেয় যে নতুন শিশুরা/তারা ঘুমোতে যাওয়ার আগেই ঘুমিয়ে পড়ে, মৃত্যুতে।/তাদের গণনা করা মূল্যহীন।'
আরওজীবন কেন ফিলিস্তিনিদের নয়
গত সাত দশক ধরে ফিলিস্তিনে দখলদার ইসরায়েলিদের বন্দুক-বোমার প্রধান লক্ষ্যবস্তু হয়ে আছে এই শিশুরা। এই উপত্যকায় শিশুদের বয়স পরিমাপ করা হয় তারা কতগুলো ইসরায়েলি হামলার শিকার হয়েছে তার ওপর ভিত্তি করে। এখানকার ২৩ লাখ জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের বয়স ১৮ বছরের কম।
লন্ডনভিত্তিক গণমাধ্যম-পর্যবেক্ষণ প্রতিষ্ঠান মিডল ইস্ট মনিটরের রামোনা ওয়াদি মনে করেন, খুব পরিকল্পিতভাবেই ফিলিস্তিনি শিশু হত্যা বা জখম করার মাধ্যমে প্রজন্মকে পঙ্গু করে দেওয়া হচ্ছে, যাদের মধ্যে উপনিবেশবিরোধী লড়াই চালু রাখার সম্ভাবনা আছে।
সর্বশেষ হিসাব অনুসারে, এবারের আড়াই মাসের হামলাতেও নিহত ফিলিস্তিনেদের মধ্যে নারী-শিশুর হার ৭০ শতাংশের বেশি।
গান দিয়ে পৃথিবী বদলে দিতে চাওয়া প্রতিবাদী পিট সিগার যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত নারী-শিশুদের নিয়ে গেয়েছিলেন, 'ফুলগুলো সব কোথায় গেল? সে কবেকার কথা/ফুলগুলো সব কোথায় গেল? কত আগের কথা।/মেয়েরা সব তুলে নিয়েছে।'
এখন ২০২৩ সালে গাজার বাস্তবতায় কার্টুনে আঁকা বুড়ো সান্তা যেন বুঝে উঠতে পারছেন না- শিশুগুলো কোথায় গেল? কে তাদের তুলে নিয়েছে?
আরওমাহফুজ আনামের লেখা: ইসরায়েলের ‘আত্মরক্ষার অধিকার’ ও ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর নিয়তি
২২ লাখ জনগোষ্ঠীর গাজা উপত্যকায় প্রায় দুই হাজার খ্রিষ্টানদের বাস। ব্যতিক্রম বাদে প্রায় প্রতি বছর বড়দিনে বেথেলহামে তীর্থযাত্রা করার সুযোগ পেতেন তারা। শহরটির অবস্থান পশ্চিম তীরের জেরুজালেম থেকে ছয় মাইল দক্ষিণে। এখানেই আছে খ্রিষ্টধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র চার্চ অব দ্য ন্যাটিভিটি।
আল জাজিজার প্রতিবেদনে বলা হয়, এই যুদ্ধ বেথলেহামের পর্যটনকেও স্থবির করে তুলেছে, যা এর অর্থনীতির ভিত্তি। ক্রিসমাসের সময় সারা বিশ্ব থেকে দর্শনার্থীরা বেথেলহামের বাজারগুলোতে ভিড় করেন। এ বছর এখানকার রাস্তাগুলো ফাঁকা। আর বেথলেহামের বাসিন্দাদের মধ্যেও কোনো উৎসবের আমেজ নেই। কারণ তাদের অনেকের স্বজন গাজার মৃত্যুকূপে আটকা পড়েছেন।
বেথেলহামের ৮৭ বছর বয়সী খ্রিষ্টান নারী উম শাদির দুই ভাইবোন গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। আরেকজন বিমান হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, 'এই গণহত্যার মধ্যে আমরা কীভাবে ক্রিসমাস উদযাপন করব? যেখানে গাজার বাসিন্দারা এক বেলা খাবার পেতে লড়াই করছে।'
আবার বেথলেহেমের লুথেরান ইভানজেলিকাল গির্জায় এবাং যিশুর জন্মদৃশ্যটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে অন্যভাবে। সেখানে খড়ভর্তি খাটের পরিবর্তে সদ্য জন্ম নেওয়া প্রভু যিশু শুয়ে আছেন ধ্বংসস্তূপের ভেতর। তার গায়ে জড়ানো ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ সংগ্রামের প্রতীক হয়ে ওঠা বিখ্যাত কালো-সাদা কেফিয়া।
লুথেরান গির্জার যাজক মুনথার আইজ্যাক দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, 'ফিলিস্তিনি শিশুদের জন্য এটাই বড়দিনের বাস্তবতা। যিশু যদি এখন জন্ম নিতেন তাহলে তিনি গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচেই থাকতেন।'
ফিলিস্তিনি শিশুদের জন্য যে 'ঘুমপাড়ানি গান' লিখেছিলেন উর্দু কবি ফয়েজ আহমদ ফয়েজ, সেখানে মায়ের কোলে শুয়ে থাকা বাচ্চার কপালে চুমু দেওয়ার জন্য চাঁদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। কারণ চাঁদ ব্যস্ত ছিল ওই মৃত্যু উপত্যকার বাসিন্দাদের সমাহিত করার কাজে।
আমেরিকান হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের (এএইচআরসি) বিবৃতিতে ব্যবহার করা ইলাস্ট্রেশন। ছবি: সংগৃহীত
তাই সেখানকার বেঁচে থাকা শিশুদের সান্ত্বনা দিতে ফয়েজকে বলতে শোনা যায়, 'না বাছা, কেঁদো না!/তোমার বাসভূমে/মৃতদের গোসল দিয়েছে সূর্য/চাঁদ দিয়েছে কবর।'
এরও অনেক আগে ফিলিস্তিনি জাতিসত্তার কবি মাহমুদ দারবিশ লিখে যান, 'আজকের দিনটি আগামী দিনের থেকে হয়তো ভালো,/কেবল মৃত্যুগুলোই আজ নতুন/প্রতিদিনই জন্ম নেয় যে নতুন শিশুরা/তারা ঘুমোতে যাওয়ার আগেই ঘুমিয়ে পড়ে, মৃত্যুতে।/তাদের গণনা করা মূল্যহীন।'
আরওজীবন কেন ফিলিস্তিনিদের নয়
গত সাত দশক ধরে ফিলিস্তিনে দখলদার ইসরায়েলিদের বন্দুক-বোমার প্রধান লক্ষ্যবস্তু হয়ে আছে এই শিশুরা। এই উপত্যকায় শিশুদের বয়স পরিমাপ করা হয় তারা কতগুলো ইসরায়েলি হামলার শিকার হয়েছে তার ওপর ভিত্তি করে। এখানকার ২৩ লাখ জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের বয়স ১৮ বছরের কম।
লন্ডনভিত্তিক গণমাধ্যম-পর্যবেক্ষণ প্রতিষ্ঠান মিডল ইস্ট মনিটরের রামোনা ওয়াদি মনে করেন, খুব পরিকল্পিতভাবেই ফিলিস্তিনি শিশু হত্যা বা জখম করার মাধ্যমে প্রজন্মকে পঙ্গু করে দেওয়া হচ্ছে, যাদের মধ্যে উপনিবেশবিরোধী লড়াই চালু রাখার সম্ভাবনা আছে।
সর্বশেষ হিসাব অনুসারে, এবারের আড়াই মাসের হামলাতেও নিহত ফিলিস্তিনেদের মধ্যে নারী-শিশুর হার ৭০ শতাংশের বেশি।
গান দিয়ে পৃথিবী বদলে দিতে চাওয়া প্রতিবাদী পিট সিগার যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত নারী-শিশুদের নিয়ে গেয়েছিলেন, 'ফুলগুলো সব কোথায় গেল? সে কবেকার কথা/ফুলগুলো সব কোথায় গেল? কত আগের কথা।/মেয়েরা সব তুলে নিয়েছে।'
এখন ২০২৩ সালে গাজার বাস্তবতায় কার্টুনে আঁকা বুড়ো সান্তা যেন বুঝে উঠতে পারছেন না- শিশুগুলো কোথায় গেল? কে তাদের তুলে নিয়েছে?
আরওমাহফুজ আনামের লেখা: ইসরায়েলের ‘আত্মরক্ষার অধিকার’ ও ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর নিয়তি
তাই সেখানকার বেঁচে থাকা শিশুদের সান্ত্বনা দিতে ফয়েজকে বলতে শোনা যায়, 'না বাছা, কেঁদো না!/তোমার বাসভূমে/মৃতদের গোসল দিয়েছে সূর্য/চাঁদ দিয়েছে কবর।'
এরও অনেক আগে ফিলিস্তিনি জাতিসত্তার কবি মাহমুদ দারবিশ লিখে যান, 'আজকের দিনটি আগামী দিনের থেকে হয়তো ভালো,/কেবল মৃত্যুগুলোই আজ নতুন/প্রতিদিনই জন্ম নেয় যে নতুন শিশুরা/তারা ঘুমোতে যাওয়ার আগেই ঘুমিয়ে পড়ে, মৃত্যুতে।/তাদের গণনা করা মূল্যহীন।'
গত সাত দশক ধরে ফিলিস্তিনে দখলদার ইসরায়েলিদের বন্দুক-বোমার প্রধান লক্ষ্যবস্তু হয়ে আছে এই শিশুরা। এই উপত্যকায় শিশুদের বয়স পরিমাপ করা হয় তারা কতগুলো ইসরায়েলি হামলার শিকার হয়েছে তার ওপর ভিত্তি করে। এখানকার ২৩ লাখ জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের বয়স ১৮ বছরের কম।
লন্ডনভিত্তিক গণমাধ্যম-পর্যবেক্ষণ প্রতিষ্ঠান মিডল ইস্ট মনিটরের রামোনা ওয়াদি মনে করেন, খুব পরিকল্পিতভাবেই ফিলিস্তিনি শিশু হত্যা বা জখম করার মাধ্যমে প্রজন্মকে পঙ্গু করে দেওয়া হচ্ছে, যাদের মধ্যে উপনিবেশবিরোধী লড়াই চালু রাখার সম্ভাবনা আছে।
সর্বশেষ হিসাব অনুসারে, এবারের আড়াই মাসের হামলাতেও নিহত ফিলিস্তিনেদের মধ্যে নারী-শিশুর হার ৭০ শতাংশের বেশি।
গান দিয়ে পৃথিবী বদলে দিতে চাওয়া প্রতিবাদী পিট সিগার যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত নারী-শিশুদের নিয়ে গেয়েছিলেন, 'ফুলগুলো সব কোথায় গেল? সে কবেকার কথা/ফুলগুলো সব কোথায় গেল? কত আগের কথা।/মেয়েরা সব তুলে নিয়েছে।'
এখন ২০২৩ সালে গাজার বাস্তবতায় কার্টুনে আঁকা বুড়ো সান্তা যেন বুঝে উঠতে পারছেন না- শিশুগুলো কোথায় গেল? কে তাদের তুলে নিয়েছে?
| হাজার বছর ধরে প্রভু যিশুর জন্মদিনে শিশুদের জন্য উপহারের ঝোলা কাঁধে ছুটে বেড়ানো সান্তাবুড়ো এমন বিপদে আগে পড়েননি কখনো। বরাবরের মতো এবারও হরিণটানা স্লেজে চড়ে বড়দিনের আগের রাতে পুরো দুনিয়া ঘুরে বাচ্চাদের ঘরের দুয়ারে উপহার পৌঁছে দিলেন তিনি। শেষমেষ আসলেন ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা হামলায় বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায়। |
২০২৪: বিশ্ব রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ৫ নির্বাচন | দুই সপ্তাহেরও কম সময় পর আসছে নতুন বছর। নতুন বছরে আমাদের দেশের পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশেও বইবে নির্বাচনী হাওয়া।
২০২৪ সালে বিশ্বের ৩০টির মতো দেশের নাগরিক নতুন রাষ্ট্রপ্রধান বা নতুন মেয়াদে বর্তমান রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচনে ভোট দেবে।
তবে বার্তাসংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদন মতে, অন্য সব নির্বাচনকে ছাপিয়ে পাঁচ দেশের নির্বাচন বিশ্বরাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
আজকের লেখায় থাকছে এই পাঁচ নির্বাচনের বিস্তারিত।
২০২৪ সালের ৫ নভেম্বর আয়োজিত হবে মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন।
জনমত জরিপ মতে, ৮৬ বছর বয়সী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেনকে অধিকাংশ ভোটারই সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের (৭৭) তুলনায় বেশি বয়সী বলে ভাবছেন।
আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে নানা গুজবও ছড়িয়ে পড়ছে। গত নির্বাচনে ট্রাম্পের সমর্থকরা বাইডেনের বিজয় মেনে না নিয়ে ক্যাপিটল হিলে অবস্থান নিয়ে ফল ঘোষণা বানচাল করার চেষ্টা চালায়।
একাধিক ফৌজদারি অপরাধ, আর্থিক কেলেঙ্কারি, কারসাজি ও যৌন হয়রানির মতো বেশ কিছু অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা চলছে।
তা সত্ত্বেও, রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে ট্রাম্পই 'ফেভারিট' হিসেবে বিবেচিত।
ইতোমধ্যে রিপাবলিকানদের নেতৃত্বাধীন হাউস অব রিপ্রেজেন্টিটিভস বাইডেনকে অভিশংসনের আওতায় আনতে তদন্তের প্রস্তাব এনেছে। সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান বারাক ওবামার সরকারে উপরাষ্ট্রপতি থাকার সময় বাইডেন তার ছেলে 'হান্টার বাইডেনের' ব্যবসা থেকে অনৈতিকভাবে মুনাফা করেছিলেন—এই অভিযোগ সত্য, কি না তা খতিয়ে দেখতেই এই তদন্ত।
দুবছর ধরে চলা ইউক্রেন যুদ্ধে শক্ত অবস্থানে থাকা ভ্লাদিমির পুতিন রাষ্ট্রপতি পদে আছেন ২৪ বছর ধরে। ২০২৪ এর মার্চে হতে যাওয়া নির্বাচনে জিতে আরও ছয় বছর এ পদে থাকার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী তিনি।
৮ ডিসেম্বর তিনি পঞ্চমবারের মতো প্রার্থিতার ঘোষণা দেন।
২০২০ এ সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে ২০৩৬ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার পথ সুগম করেন পুতিন। এবার নির্বাচিত হলে রুশ কিংবদন্তী নেতা জোসেফ স্তালিনের শাসনামলকে ছাড়িয়ে যাবে পুতিন-রাজত্ব।
কার্যত, পুতিনের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। তার মূল ও একমাত্র গ্রহণযোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যালেক্সেই নাভালনি ১৯ বছরের কারাদণ্ডাদেশ নিয়ে কারাগারে রয়েছেন।
আগামী এপ্রিল-মে মাসে প্রায় ১০০ কোটি ভারতীয় নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপি তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করবে।
এএফপির বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের বিপুল পরিমাণ হিন্দু জনগোষ্ঠী মোদির ভোটব্যাংক হিসেবে কাজ করতে পারে। সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে বিজেপির বিরুদ্ধে।
নাগরিক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগ থাকলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন মোদি—এমনটাই ভাবেন অনেক ভারতীয়। ফলে ভোটে বেশ ভালো করার সম্ভাবনা আছে মোদির।
২০২৪ সালের আরেকটি বড় ও উল্লেখযোগ্য নির্বাচন হল ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচন। এই বহুজাতিক নির্বাচনে ভোট দেবেন ইউরোপের ৪০ কোটি মানুষ। এএফপির বিশ্লেষকরা মত দেন, এই ভোট কট্টর ডানপন্থি, 'পপুলিস্ট' (জনতোষণবাদী) নেতাদের জন্য একটি অগ্নিপরীক্ষা।
নভেম্বরে ডাচ নির্বাচনে গ্রিট ওয়াইল্ডারের ইসলামবিরোধী ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিরোধী পিভিভি ফ্রিডম পার্টি ও গত বছর ইতালিতে জর্জিয়া মেলোনির কট্টর ডানপন্থী ব্রাদার্স অব ইতালির বিজয় ডানপন্থীদের পালে হাওয়া দিলেও, এই নির্বাচনেই তাদের জনপ্রিয়তা যাচাই হবে।
তবে পোল্যান্ডকে দেখে সাহস পেতে পারে ব্রাসেলস। ইইউর সমর্থক হয়েও ক্ষমতায় ফিরেছেন ইউরোপীয় কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি ডোনাল্ড টাস্ক।
জুনে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়বেন দুই নারী। যার ফলে যুগ যুগ ধরে চলে আসা পুরুষতান্ত্রিক ক্ষমতা অবকাঠামোয় আসতে যাচ্ছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।
এক দিকে আছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস মানুয়েল লোপেজ ওবরাদরের মোরেনা পার্টির প্রার্থী ক্লদিয়া শেইনবম। তিনি রাজধানী মেক্সিকো সিটির সাবেক মেয়র।
অপরদিকে আছেন দেশটির ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধি জোচিল গালভেজ। তিনি বিরোধীদলীয় জোট 'ব্রড ফ্রন্ট ফর মেক্সিকোর' পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী।
সূত্র: এএফপি
গ্রন্থনা: মাহমুদ নেওয়াজ জয়
| দুই সপ্তাহেরও কম সময় পর আসছে নতুন বছর। নতুন বছরে আমাদের দেশের পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশেও বইবে নির্বাচনী হাওয়া। |
চেক প্রজাতন্ত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত অন্তত ১৫ | চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগের চার্লস বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে আরও অন্তত ২৫ জন।
দেশটির পুলিশ প্রধান মার্টিন ভনড্রেসেকের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার সিএনএন এ খবর জানিয়েছে।
নিহতদের পরিচয় যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
চার্লস ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসটি মধ্য প্রাগের একটি জনপ্রিয় পর্যটন এলাকায়।
পুলিশ বলছে, সন্দেহভাজন হামলাকারী চার্লস ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী। তাকে 'হত্যা' করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলার সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নিজেদের বিভিন্ন শ্রেণীকক্ষে তালাবদ্ধ করে রেখেছিল। হামলা শেষে তাদের বের হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
ক্যাম্পাসে কঠোর নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, 'আমরা সবাইকে শান্ত ও সংযত থাকতে বলছি। আমরা আবারও তাদের সবার প্রতি সমবেদনা জানাই যারা তাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছেন।'
| চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগের চার্লস বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে আরও অন্তত ২৫ জন। |
৯০ সেকেন্ড আগে পরীক্ষার খাতা নিয়ে নেওয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে মামলা | নির্ধারিত সময়ের ৯০ সেকেন্ড আগে কলেজের ভর্তি পরীক্ষার খাতা নিয়ে নেওয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার একদল শিক্ষার্থী।
বিবিসি জানায়, কমপক্ষে ৩৯ জন শিক্ষার্থী মঙ্গলবার এ মামলা করেছেন। তারা প্রত্যেকে সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২ কোটি ওয়ান (১৫ হাজার ৪০০ মার্কিন ডলার) দাবি করেছেন। আগামী বছর এই ভর্তি পরীক্ষা দিতে এক বছরের পড়াশোনার খরচ হিসেবে এ অর্থ চেয়েছেন তারা।
দেশটির কলেজ ভর্তি পরীক্ষা সুনেউং নামে পরিচিত। এটি বেশ কয়েকটি বিষয়ে আট ঘণ্টার একটি ম্যারাথন পরীক্ষা। সুনেউং বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষাগুলোর মধ্যে একটি।
প্রতি বছর এ পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় যেন ব্যাঘাত না ঘটে সেজন্য বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা নেওয়া হয়—যেমন দেশের আকাশসীমা বন্ধ করা এবং স্টক মার্কেট দেরিতে খোলা।
গত ৮ ডিসেম্বর চলতি বছরের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়।
শিক্ষার্থীদের দাবি, পরীক্ষার প্রথম বিষয় ছিল কোরিয়ান। এ পরীক্ষা চলাকালে রাজধানী সিউলের কোনো কোনো পরীক্ষাকেন্দ্রে আগেই ঘণ্টা বেজে গিয়েছিল। কিছু ছাত্র তখনই এর প্রতিবাদ জানায়। কিন্তু সুপারভাইজাররা তাও তাদের খাতা নিয়ে যায়। পরের পরীক্ষা শুরুর আগেই নিজেদের ভুল শনাক্ত করেন শিক্ষকরা। তারা মধ্যাহ্নভোজের বিরতির সময় শিক্ষার্থীদের ওই দেড় মিনিট সময় দেন।
তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ওই দেড় মিনেটে তারা উত্তরপত্রে দাগ টানতে পেরেছেন শুধু। তাদের কোনো প্রশ্নের উত্তর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপের খবরে বলা হয়, এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা এতটাই হতাশ হয়ে যায়, তারা বাকি পরীক্ষায় মনোযোগ দিতে পারেনি। এমনকি কেউ কেউ হাল ছেড়ে বাড়ি চলে যায়।
তাদের আইনজীবী কিম উ-সুক জানান, এ ভুলের জন্য শিক্ষা কর্তৃপক্ষ ক্ষমা চাননি। পাবলিক ব্রডকাস্টার কেবিএস জানায়, কয়েকটি পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা একজন সুপারভাইজার সময়ের হিসেবে ভুল করায় এ ঘটনা ঘটে।
বিবিসি জানায়, দক্ষিণ কোরিয়ায় পরীক্ষা শেষের আগে ঘণ্টা বাজানোর ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এমনকি এ ধরনের ঘটনায় মামলাও প্রথম নয়। ২০২১ সালের ভর্তি পরীক্ষায় দুই মিনিট আগে ঘণ্টা বাজানোর অভিযোগ মামলা করলে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে শিক্ষার্থীদের ৭০ লাখ ওয়ান ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সিউলের একটি আদালত।
| নির্ধারিত সময়ের ৯০ সেকেন্ড আগে কলেজের ভর্তি পরীক্ষার খাতা নিয়ে নেওয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার একদল শিক্ষার্থী। |
ক্যাপিটলে হামলা: কলোরাডোয় ভোটে অংশ নিতে পারবেন না ট্রাম্প | আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কলোরাডো অঙ্গরাজ্যে ভোটে অংশ নিতে পারবেন না সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্ষমতায় থাকার সময় ট্রাম্পের সমর্থকরা ক্যাপিটলে হামলা চালানোর ঘটনায় কলোরাডো সুপ্রিম কোর্ট সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত (রুলিং) দিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ট্রাম্পই প্রথম সাবেক প্রেসিডেন্ট যার বিরুদ্ধে কোনো অঙ্গরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট এমন সিদ্ধান্ত দিলেন।
ধারণা করা হচ্ছে, এ কারণে ট্রাম্প পরবর্তী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা হারাতে পারেন।
এতে আরও বলা হয়, ট্রাম্প সমর্থকরা হয়ত কলোরাডো আদালতের এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করবেন।
কলোরোডা সুপ্রিম কোর্টের এই রুলিংয়ের পক্ষে ছিলেন চার ও বিপক্ষে ছিলেন তিন বিচারপতি। এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র আগামী ৫ মার্চ কলোরোডায় রিপাবলিকান পার্টির প্রাথমিক প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। তবে তা আগামী ৫ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এই অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্পের ভোটের ওপর প্রভাব ফেলবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
এ সংক্রান্ত পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, কলোরোডায় ডেমোক্রেটরা ভালো অবস্থানে আছেন। সেই বিবেচনায় এখানে ট্রাম্পের অবস্থা যাই হোক না কেন বর্তমান ডেমোক্রেট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অবস্থান শক্ত।
ডোনাল্ড ট্রাম্প এই রুলিংয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের কথা জানিয়েছেন। কলোরোডা আদালত জানিয়েছে, এই রুলিং আগামী ৪ জানুয়ারির আগে কার্যকর করা হবে না, যেন ট্রাম্প এর বিরুদ্ধে আবেদনের সুযোগ পান।
সংবাদ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের নয় বিচারপতির মধ্যে ছয়জন রক্ষণশীল। এ ছাড়াও, তাদের তিনজনকে ট্রাম্প নিয়োগ দিয়েছিলেন। তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প অংশ নিতে পারবেন কিনা।
ট্রাম্পের সমর্থকরা কলোরোডার শীর্ষ আদালতের এই সিদ্ধান্তকে 'অগণতান্ত্রিক' হিসেবে অভিহিত করেছেন। তাদের এক মুখপাত্র বলেছেন, 'কলোরোডা সুপ্রিম কোর্ট একটি পুরোপুরি ভুল সিদ্ধান্ত দিলো। আমরা দ্রুত এর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট আবেদন করবো।'
এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রচারণা দল কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
| আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কলোরাডো অঙ্গরাজ্যে ভোটে অংশ নিতে পারবেন না সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। |
চীনে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১১ | চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ গানসুর জিশিশান এলাকায় ভূমিকম্পে অন্তত ১১১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৩০ জনের বেশি।
গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে এই ভূমিকম্প হয়।
চীনের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সিইএনসি দেশটির বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে জানায় ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ছয় দশমিক দুই ম্যাগনিটিউড ও গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার।
প্রায় দুই হাজার ২০০ উদ্ধারকর্মী ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দিচ্ছেন উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন পর্যন্ত কতজন নিখোঁজ আছেন তা জানা যায়নি।
সামরিক বাহিনী ও পুলিশ সদস্যরাও উদ্ধারকাজে সহায়তা করছেন।
আজ স্থানীয় সময় সকালে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কাছে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় মাইনাস ১৪ ডিগ্রি।
প্রতিবেদন অনুসারে, ভূমিকম্পে সেই এলাকায় পানি-বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
| চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ গানসুর জিশিশান এলাকায় ভূমিকম্পে অন্তত ১১১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৩০ জনের বেশি। |
ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবে শিশু-নারীসহ অন্তত ৬১ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু | লিবিয়ার উপকূলের কাছে ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবে শিশু-নারীসহ অন্তত ৬১ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা আইওএম।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়—আজ রোববার স্থানীয় সময় ভোরে এ দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে আইওএম'র লিবিয়া কার্যালয় জানিয়েছে, নৌকাটিতে ৮৫ জনের মতো অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন।
সংস্থাটির এক বার্তায় আরও বলা হয়, লিবিয়ার উত্তর-পশ্চিম উপকূল জুয়ারা থেকে ছেড়ে যাওয়া নৌকাটি উঁচু ঢেউয়ের তোড়ে ডুবে যাওয়ায় 'বহু অভিবাসনপ্রত্যাশীর' মৃত্যু হয়েছে।
নৌকাটিতে শিশু ও নারীসহ নাইজেরিয়া, গাম্বিয়া ও আফ্রিকার অন্যান্য দেশের নাগরিক ছিলেন। এ ঘটনায় অন্তত ২৫ জনকে উদ্ধার করে তাদেরকে লিবিয়ার আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
আইওএম'র চিকিৎসক দল উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের চিকিৎসা দিচ্ছে। বেঁচে যাওয়াদের শারীরিক অবস্থা ভালো বলেও সংস্থাটির বার্তায় বলা হয়েছে।
আইওএম'র মুখপাত্র ফ্লাভিও দি গিয়াকোমো সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ জানান, চলতি বছর এ ভূমধ্যসাগরেই একের পর এক দুর্ঘটনায় দুই হাজার ২৫০ জনের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে।
গত ১৪ জুন লিবিয়া থেকে মাছ ধরার নৌকা 'আদ্রিয়ানা'য় ৭৫০ জনের মতো অভিবাসনপ্রত্যাশী ইতালিতে যাওয়া চেষ্টা করলে নৌকাটি গ্রিসের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের কাছে ডুবে যায়। এ ঘটনায় ১০৪ জনকে জীবিত ও ৮২ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়।
নৌকার যাত্রীদের অধিকাংশই ছিলেন সিরিয়া, পাকিস্তান ও মিশরের নাগরিক।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার হিসাবে, এ বছর তিউনিসিয়া ও লিবিয়া থেকে এক লাখ ৫৩ হাজারের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী ইতালি গিয়েছেন।
সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিবাসনপ্রত্যাশীরা ভূমধ্যসাগর হয়ে ইতালির ভেতর দিয়ে ইউরোপে যেতে সাধারণত লিবিয়া ও তিউনিসিয়ার উপকূল ব্যবহার করে থাকেন।
| লিবিয়ার উপকূলের কাছে ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবে শিশু-নারীসহ অন্তত ৬১ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা আইওএম। |
ইরানে মোসাদ এজেন্টের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর | ইরানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এক এজেন্টের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
আজ শনিবার ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
ইরনার প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ব্যক্তি বিদেশি সংস্থাগুলোর সঙ্গে বিশেষ করে মোসাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন এবং তাদের গোপনীয় তথ্য সরবরাহ করে আসছিলেন।
তবে ইরনার প্রতিবেদনে ওই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হয়নি।
ইরনা আরও জানায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের বিরোধী দল ও সংগঠনের জন্য প্রচারের লক্ষ্যে মোসাদ কর্মকর্তাকে গোপনীয় তথ্য সরবরাহ করেছিলেন। তবে কথিত এই হস্তান্তর কোথায় হয়েছে তা জানানো হয়নি।
এই অভিযোগে কবে, কখন ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাও স্পষ্ট নয়। যদিও ইরনা বলছে, ওই ব্যক্তি আদালতে আপিল করেছিলেন। তবে তা প্রত্যাখ্যান হয়।
ইরনা জানায়, সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশের জাহেদান কারাগারে ওই ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
| ইরানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এক এজেন্টের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। |
গাজা পরিস্থিতি নিয়ে বানানো বিতর্কিত বিজ্ঞাপন সরিয়ে নিল জারা | তীব্র সমালোচনা ও প্রতিবাদের মুখে ওয়েবসাইট থেকে নতুন অ্যাড ক্যাম্পেইন সরিয়ে নিয়েছে মুখে জনপ্রিয় পোশাক ব্র্যান্ড জারা।
অ্যাড ক্যাম্পেইনটি প্রকাশের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
অনেকেই বলছেন, অ্যাড ক্যাম্পেইনের ছবিগুলোতে ইসরায়েল-গাজার সংঘাতকে হেয় করা হয়েছে। তবে জারা কর্তৃপক্ষের দাবি, এটি পুরোপুরি ভুল বোঝাবুঝি। কারণ ক্যাম্পেইনের ছবিগুলি ৭ অক্টোবরের আগে তোলা।
এ বিষয়ে জারার পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে।
ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত এই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুর্ভাগ্যবশত ক্যাম্পেইনের ছবিগুলো দেখে অনেক গ্রাহক মর্মাহত হয়েছেন। ছবিগুলো এখন সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ছবিগুলো তোলার সময় কারো অনুভূতিতে আঘাত করার উদ্দেশ্য ছিল না।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, 'ছবিগুলোর আইডিয়া জুলাই মাসে অনুমোদিত হয়েছে। ছবিগুলো সেপ্টেম্বর মাসে, সংঘাত শুরুর আগে, তোলা হয়েছে।'
ক্যাম্পেইনের জন্য টিম ওয়াকারের তোলা ছবিগুলোতে মডেল ছিলেন ক্রিস্টেন ম্যাকমেনামি। জারা বলছে, ছবির ব্যাকগ্রাউন্ডটি মূলত একজন ভাস্করের স্টুডিওর আদলে বানানো হয়েছে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের মনে হয়েছে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন ও নির্বিচারে চালানো গণহত্যাকে উপহাস করা হয়েছে।
একটি ছবিতে দেখা গেছে ম্যাকমেনামি সাদা কাপড়ে মোড়ানো ম্যানেকিন কাঁধে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। অন্য কয়েকটি ছবির ব্যাকগ্রাউন্ডে বেশ কিছু ভাঙা ভাস্কর্য ও প্লাস্টারবোর্ড দেখা যাচ্ছিল।
জারার মন্তব্য অনুযায়ী, ছবিগুলোর একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল শৈল্পিক দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি পোশাক শিল্পকে দেখানো। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (টুইটার) তীব্র সমালোচনার পাশাপাশি #বয়কটজারা ট্রেন্ড শুরু হয়েছিল।
এক্সে একজন ব্যবহারকারী তার পোস্টে লিখেছেন, 'ওরা (জারা) আমাদের নিয়ে, হত্যার শিকার শিশু ও আমাদের ধ্বংস হয়ে যাওয়া ঘরবাড়ি নিয়ে মজা করছে।'
যুক্তরাজ্যের 'অ্যাডভারটাইজিং স্ট্যান্ডার্ডস অথোরিটি' তথ্য অনুযায়ী, এই ক্যাম্পেইনের বিরুদ্ধে ১১০টি অভিযোগ এসেছে যেখানে বলা হয়েছে ক্যাম্পেইনের ছবিগুলো অত্যন্ত আপত্তিকর ও ইসরায়েল-গাজার চলমান সংঘাতকে নির্দেশ করে।
গত মাসে, এমএস ব্র্যান্ডও একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে। পোস্টের ছবিতে দেখা গেছে লাল, সবুজ ও রূপালি রঙের কয়েকটি ক্রিসমাস হ্যাট পোড়ানো হচ্ছে। ফিলিস্তিনের পতাকার রঙের টুপি পোড়ানোর অভিযোগ এনে অনেকেই ব্র্যান্ডটির সমালোচনা করে। পরবর্তীতে ছবিটি সরিয়ে নেয় কর্তৃপক্ষ ও ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দেয়।
জারার মন্তব্য অনুযায়ী, ছবিগুলোর একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল শৈল্পিক দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি পোশাক শিল্পকে দেখানো। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (টুইটার) তীব্র সমালোচনার পাশাপাশি #বয়কটজারা ট্রেন্ড শুরু হয়েছিল।
এক্সে একজন ব্যবহারকারী তার পোস্টে লিখেছেন, 'ওরা (জারা) আমাদের নিয়ে, হত্যার শিকার শিশু ও আমাদের ধ্বংস হয়ে যাওয়া ঘরবাড়ি নিয়ে মজা করছে।'
যুক্তরাজ্যের 'অ্যাডভারটাইজিং স্ট্যান্ডার্ডস অথোরিটি' তথ্য অনুযায়ী, এই ক্যাম্পেইনের বিরুদ্ধে ১১০টি অভিযোগ এসেছে যেখানে বলা হয়েছে ক্যাম্পেইনের ছবিগুলো অত্যন্ত আপত্তিকর ও ইসরায়েল-গাজার চলমান সংঘাতকে নির্দেশ করে।
গত মাসে, এমএস ব্র্যান্ডও একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে। পোস্টের ছবিতে দেখা গেছে লাল, সবুজ ও রূপালি রঙের কয়েকটি ক্রিসমাস হ্যাট পোড়ানো হচ্ছে। ফিলিস্তিনের পতাকার রঙের টুপি পোড়ানোর অভিযোগ এনে অনেকেই ব্র্যান্ডটির সমালোচনা করে। পরবর্তীতে ছবিটি সরিয়ে নেয় কর্তৃপক্ষ ও ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দেয়।
| তীব্র সমালোচনা ও প্রতিবাদের মুখে ওয়েবসাইট থেকে নতুন অ্যাড ক্যাম্পেইন সরিয়ে নিয়েছে মুখে জনপ্রিয় পোশাক ব্র্যান্ড জারা। |
মক্কা ও আশেপাশে প্রবল ঝড়-বৃষ্টি, ডুবে গেছে রাস্তা | সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা নগরী ও এর আশেপাশের এলাকায় প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতে রাস্তা ডুবে গেছে। দেশটিতে বজ্র-ঝড়ের পাশাপাশি ধূলিঝড়ের সংবাদ পাওয়া গেছে।
আজ মঙ্গলবার সৌদিপ্রবাসী বাংলাদেশি হাবিব দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, 'গতকাল ও এর আগের দিনও ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে।'
গতকাল সোমবার দুবাইভিত্তিক সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস জানায়, সৌদি আরবের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানা গেছে দেশটিতে আগামীকাল বুধবার পর্যন্ত এই দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি থাকতে পারে।
এতে আরও বলা হয়, সৌদি আরবের জাতীয় আবহাওয়া অফিস (এনসিএম) জানিয়েছে গত রোববার দেশটির কয়েকটি এলাকায় তুমুল বৃষ্টি ও বজ্রসহ ঝড় হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভিডিওগুলো প্রকাশ করে খালিজ টাইমস বলেছে, তুমুল বৃষ্টিতে পবিত্র মক্কা নগরীর অনেক রাস্তা ডুবে গেছে।
এনসিএম দেশটির কয়েকটি অঞ্চলে 'হলুদ সতর্কতা' জারি করেছে। আগামীকাল বুধবার পর্যন্ত দেশটিতে ঝড়-বৃষ্টির পাশাপাশি ধূলিঝড় হতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
বৃষ্টিতে রাস্তায় রাখা গাড়িগুলোর জানালা পর্যন্ত ডুবে থাকার দৃশ্য কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গেছে। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও কাবা শরিফে ওমরা পালন করেছেন অনেকে।
এ ছাড়াও, বন্দরনগরী জেদ্দায় মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে সংবাদ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মক্কার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের বার্তায় সবাইকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি বন্যাকবলিত এলাকা থেকে দূরে থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
| সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা নগরী ও এর আশেপাশের এলাকায় প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতে রাস্তা ডুবে গেছে। দেশটিতে বজ্র-ঝড়ের পাশাপাশি ধূলিঝড়ের সংবাদ পাওয়া গেছে। |
কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে ইসরায়েলে ১৪ হাজার গোলা বিক্রির সিদ্ধান্ত | কংগ্রেসের অনুমোদন এড়িয়ে বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করে ইসরায়েলের কাছে ট্যাংকের ১৪ হাজার গোলা বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।
গতকাল শনিবার মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদরদপ্তর পেন্টাগনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদন অনুসারে—পেন্টাগনের বার্তায় বলা হয়েছে, গত শুক্রবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১০৬ দশমিক পাঁচ মিলিয়ন ডলারের ট্যাংক শেল জরুরিভিত্তিতে ইসরায়েলে বিক্রির জন্য অস্ত্র রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ আইনের ধারা ব্যবহার করে।
বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রির যে অনুমোদন কংগ্রেসের কাছে চেয়েছে এই গোলা সেই চালানের অংশ।
সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫০০ মিলিয়নের বেশি দামে সেই অস্ত্রের চালানের মধ্যে আছে ইসরায়েলের মেরকাভা ট্যাংকের ৪৫ হাজার গোলা। ইসরায়েল এই ট্যাংক গাজা হামলায় ব্যবহার করে সেখানে কয়েক হাজার বেসামরিক মানুষকে হত্যা করেছে।
এতে আরও বলা হয়, যুদ্ধ জোরালো হয়ে উঠার প্রেক্ষাপটে মার্কিন অস্ত্র কোথায় ও কীভাবে ব্যবহার করা হবে তা নিয়ে দেশটিতে জোর আলোচনা চলছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরায়েলকে এসব অস্ত্র ব্যবহারে শর্ত দেওয়ার পরিকল্পনা নেই।
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি নিয়ে দেশটির মানবাধিকার সংগঠনগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, গাজায় বেসামরিক মানুষ হত্যা বন্ধে ইসরায়েলকে চাপ দেওয়ার বিষয়ে ওয়াশিংটনের প্রচেষ্টার সঙ্গে এটি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
রয়টার্স জানায়, গতকাল মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ওয়াশিংটন সবসময় ইসরায়েলি সরকারকে পরিষ্কার ভাষায় বলছে যে তাদের উচিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে চলা।
তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলে যে অস্ত্র বিক্রি করা হচ্ছে তা দেশটির নিরাপত্তার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতির অংশ।
| কংগ্রেসের অনুমোদন এড়িয়ে বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করে ইসরায়েলের কাছে ট্যাংকের ১৪ হাজার গোলা বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। |
‘যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে’ | নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর দেশ যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বমঞ্চে একা হয়ে পড়ছে বলে বিবিসির এক সংবাদ প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে।
আজ শনিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির উত্তর আমেরিকার সংবাদদাতা নাদা তাওফিক জানান, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো মনে করছে—ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত গাজায় সাধারণ মানুষের চরম দুর্দশার মধ্যে নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, চিকিৎসাসেবা দেওয়া বেসরকারি সংগঠন ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস বলেছে—'এই ভেটো মানবতার বিরুদ্ধে।'
এতে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুক্তরাষ্ট্র ক্রমেই একা হয়ে পড়ছে।
জাতিসংঘের ৯৭ দেশ ও নিরাপত্তা পরিষদের ১৩ সদস্য গাজায় জরুরিভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও এই প্রস্তাবে বিরোধিতা করে যুক্তরাষ্ট্র।
সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়, বাইডেন প্রশাসন মনে করছে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে হামাস উপকৃত হবে। তাই যুক্তরাষ্ট্র গাজায় বেসামরিক মানুষদের রক্ষা করতে ইসরায়েলকে চাপ দিয়ে যাচ্ছে।
তবে জাতিসংঘের অনেক সদস্য মনে করছে, ভেটো প্রয়োগের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের অপকর্মকে ক্রমাগত সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
এর ফলে এটি শুধু ইসরায়েলের যুদ্ধ নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রেরও যুদ্ধে পরিণত হওয়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
| নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর দেশ যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বমঞ্চে একা হয়ে পড়ছে বলে বিবিসির এক সংবাদ প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে। |
যুদ্ধাপরাধে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে যুক্তরাষ্ট্র: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ | অবরুদ্ধ ও বিধ্বস্ত গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র 'যুদ্ধাপরাধে জড়িয়ে পড়ার' ঝুঁকিতে আছে বলে সতর্ক করেছে নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
আজ শনিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, এইচআরডব্লিউর জাতিসংঘ পরিচালক লুই শাখবোনো বলেছেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দেওয়ায় দেশটি 'যুদ্ধাপরাধে জড়িয়ে পড়ার' ঝুঁকিতে আছে।
তিনি বলেন, 'ইসরায়েলকে ক্রমাগত অস্ত্র ও কূটনৈতিক সহায়তা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র নৃশংসতায় জড়িয়ে পড়েছে। তারা গাজায় সব ফিলিস্তিনিকে শাস্তি দিচ্ছে।'
এইচআরডব্লিউর জাতিসংঘ পরিচালক শাখবোনো আরও বলেন, 'আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে সব বেসামরিক মানুষকে রক্ষা করতে হবে। পাশাপাশি, সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে।'
যুক্তরাষ্ট্র নিজেই ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সংঘাত এড়িয়ে চলার আহ্বান জানালেও পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী দেশটি নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো দেওয়ায় এমন মন্তব্য করেন লুই শাখবোনো।
| অবরুদ্ধ ও বিধ্বস্ত গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র 'যুদ্ধাপরাধে জড়িয়ে পড়ার' ঝুঁকিতে আছে বলে সতর্ক করেছে নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। |
হুতিদের প্রতি সংযম দেখাতে যুক্তরাষ্ট্রকে সৌদির অনুরোধ | লোহিত সাগরে চলাচলকারী পণ্যবাহী জাহাজে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের আক্রমণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে সংযম দেখানোর অনুরোধ করেছে সৌদি আরব।
গতকাল বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, রিয়াদ চায় না ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ুক।
এতে আরও বলা হয়, রিয়াদের বার্তা হলো—যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ওয়াশিংটনকে সংযম দেখাতে হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে তাতে সৌদি আরব সন্তুষ্ট।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর তেল আবিব গাজায় আক্রমণ চালালে ইরান-সমর্থিত হুতিরা ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়।
এ ছাড়াও, হুতিরা লোহিত সাগরে বেশ কয়েকটি পণ্যবাহী জাহাজে আক্রমণ করে।
ইয়েমেনের রাজধানী সানাসহ দেশটির বিস্তৃত এলাকা নিয়ন্ত্রণকারী হুতিরা ঘোষণা দিয়েছে যে তাদের সব হামলা ফিলিস্তিনের সমর্থনে চালানো হচ্ছে। তারা গাজায় হামলা বন্ধে ইসরায়েলকে বাধ্য করতে ইয়েমেন থেকে প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার দূরের দেশটিতে আরও হামলা চালাবে।
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর আগে হুতিরা বিশ্বের অন্যতম তেল রপ্তানিকারক দেশ প্রতিবেশী সৌদি আরবেও ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছিল। সৌদি আরব ইয়েমেনে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের সমর্থনে হুতিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। সম্প্রতি রিয়াদ হুতিদের সঙ্গে আলোচনায় বসায় হুতি-সৌদি যুদ্ধ বেশ কিছুদিন থেকে বন্ধ আছে।
চলমান ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে হুতিরা জড়িয়ে পড়ায় পুরো মধ্যপ্রাচ্য বড় মাপের যুদ্ধের ঝুঁকিতে আছে উল্লেখ করে রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিশ্বের অধিকাংশ তেল-গ্যাস লোহিত সাগর দিয়ে জাহাজে সরবরাহ করা হয়। তাই তেল রপ্তানিকারক দেশগুলো এ নিয়ে শঙ্কায় আছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের পর থেকে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো সিরিয়া ও ইরাকে মার্কিন লক্ষ্যবস্তুগুলোয় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
| লোহিত সাগরে চলাচলকারী পণ্যবাহী জাহাজে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের আক্রমণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে সংযম দেখানোর অনুরোধ করেছে সৌদি আরব। |
নেভাডা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাস ভেগাস ক্যাম্পাসে গুলিতে নিহত ৪ | যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নেভাডার লাস ভেগাস (ইউএনএলভি) ক্যাম্পাসে গুলির ঘটনায় বন্দুকধারীসহ চার জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির পুলিশ প্রশাসন।
এ ঘটনায় আরও একজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
গতকাল বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, পুলিশ কর্মকর্তারা সন্দেহভাজন বন্দুকধারীকে হত্যা করেছেন। তবে তারা বন্দুকধারীসহ নিহতদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।
আজ বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, গতকাল নেভাডার স্থানীয় সময় সকালে এই ঘটনা ঘটে।
গতকাল স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় লাস ভেগাস মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগের শেরিফ কেভিন ম্যাকম্যাহিল সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, 'ঘটনার কারণ এখনো জানা যায়নি।'
তিনি জানান, গুরুতর আহত ব্যক্তিকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা এখন একটু ভালো।
'আতঙ্কগ্রস্ত আরও চারজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সামান্য আহত দুই পুলিশ কর্মকর্তাও চিকিৎসা নিয়েছেন,' যোগ করেন কেভিন ম্যাকম্যাহিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী সংবাদমাধ্যম এবিসির স্থানীয় কার্যালয়কে বলেন, 'বুঝতে পারছিলাম না এমন পরিস্থিতিতে আসলে কী করা উচিত। পরিবারের সদস্যদের ফোন দেব, নাকি প্রিয় বন্ধুদের বার্তা পাঠাবো। হামলাকারী যে কোনো মুহূর্তে দরজা ভেঙে রুমে ঢুকে পড়তে পারে।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম টুইটে বলা হয়, ক্যাম্পাসে গুলির ঘটনায় পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে।
স্টুডেন্ট ইউনিয়ন ভবনের কাছে গুলির ঘটনায় ক্যাম্পাস পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে উল্লেখ করে প্রথম টুইটের ২০ মিনিট পর বলা হয়, বিম হলের সব শিক্ষার্থীকে সেখান থেকে সরে গিয়ে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে হবে।
বার্তায় সব শিক্ষার্থীকে নিরাপদে থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বানও জানানো হয়।
| যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নেভাডার লাস ভেগাস (ইউএনএলভি) ক্যাম্পাসে গুলির ঘটনায় বন্দুকধারীসহ চার জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির পুলিশ প্রশাসন। |
বাংলাদেশের ইতিহাসে হেনরি কিসিঞ্জারের প্রভাব | গত ২৯ নভেম্বর ১০০ বছর বয়সে মারা যাওয়া হেনরি কিসিঞ্জারকে নিয়ে বিশ্বজুড়ে প্রকাশিত হয়েছে নানান প্রতিক্রিয়া। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঊষালগ্নে তিনি ছিলেন প্রচণ্ড ক্ষমতাধর।
সে দিনগুলোয় কিসিঞ্জার কী করেছিলেন, কিংবা তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কী করেননি—তা বেশ বড় আকারে প্রভাব ফেলেছে আমাদের দেশের ইতিহাসে।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় কিসিঞ্জার ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৭ সালের মধ্যে যখন বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াতে বাংলাদেশ হিমশিম খাচ্ছে, সে সময়টিতে তিনি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যখন পাকিস্তানি বাহিনী নিরীহ-নিরস্ত্র বাঙালির ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে, সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন রিচার্ড নিক্সন।
যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ মানুষ ও দেশটির কংগ্রেসে এই অন্যায়ের বিরোধিতা করলেও প্রেসিডেন্ট ও জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শকের ভাবনা ছিল ভিন্ন। তারা পাকিস্তানিদের কার্যক্রমকে সমর্থন করেছিলেন। এর পেছনে নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কে পাকিস্তানের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা৷
এই সম্পর্ক স্থাপনের কারিগর ছিলেন হেনরি কিসিঞ্জার। তিনি একাধারে এর স্বপ্নচারী ও বাস্তবায়নকারী। যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা কিসিঞ্জার এই সম্পর্ককে এতটা প্রাধান্য দেওয়ায় বিষয়টি পরোক্ষভাবে বাংলাদেশি জনগণের দুর্ভাগ্যের কারণে রূপান্তরিত হয়।
হেনরি কিসিঞ্জার। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো
১৯৭১ এর গ্রীষ্মে কিসিঞ্জার এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে ভারতে যান। সেখানে তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ সম্পর্কে ভারতের মনোভাব যাচাই করেন।
এরপর তিনি পাকিস্তান সফর করেন। সেখানে একনায়ক জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে চমকপ্রদ এক মতবিনিময় হয় তার। ইয়াহিয়া যখন তার কাছে জানতে চান, কিসিঞ্জার তাকে একনায়ক মনে করেন কিনা- জবাবে কিসিঞ্জার বলেন, 'আমি নিশ্চিত নই। আপনি যদি আদতে একজন একনায়ক হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি নির্বাচন আয়োজনে খুব একটা পারদর্শী নন।'
এই বাক্যালাপ থেকে আমরা কিসিঞ্জারের মনোভাব সম্পর্কে জানতে পারি—ঠিক কীভাবে তিনি এ অঞ্চলের পরিস্থিতিকে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তিনি ছিলেন এমন মার্কিন কূটনীতিক, যার সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ছিল। এ ক্ষেত্রে একনায়কের অপকর্ম বা জনগণের দুর্দশাকে বিবেচনায় নেওয়ার চিন্তা তার মাথায় আসেনি।
এই সাক্ষাতের সময়ই কিসিঞ্জারের পাকিস্তান থেকে গোপনে চীনে যাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়। রিচার্ড নিক্সনের ১৯৭২ সালের চীন সফরের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো নির্ধারণ করতেই তিনি সে সময় সেখানে যান।
১৯৭১ সাল জুড়ে চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ব্যাপারেই কিসিঞ্জার ও হোয়াইট হাউসকে তৎপর হতে দেখা যায়। বাংলাদেশের মানুষের ওপর পাকিস্তানের চালানো গণহত্যাকে তারা দেখেছেন বাড়তি ঝামেলা হিসেবে।
হেনরি কিসিঞ্জার। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো
যুক্তরাষ্ট্র ধরে নেয়, গণহত্যার বিপক্ষে অবস্থান নিলে চীনের সঙ্গে আলোচনায় তাদের মূল্য মধ্যস্থতাকারী ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হবে।
নিক্সনের প্রশাসন দ্ব্যর্থহীনভাবে এই অবস্থানই ধরে রাখে। কারণ স্নায়ুযুদ্ধে তাদের নতুন সঙ্গী চীন পাকিস্তান সরকারের কার্যক্রমকেই সমর্থন দিতে থাকে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আনা প্রস্তাবে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে বাংলাদেশের বিজয়ের পথ বন্ধ করার চেষ্টা করে। তবে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সমর্থনে এই প্রচেষ্টা নস্যাৎ হয়।
বহু বাংলাদেশির কাছে হেনরি কিসিঞ্জার কুখ্যাত মানুষ। তিনি বাংলাদেশকে 'তলাবিহীন ঝুড়ি' আখ্যায়িত করে নিন্দা কুড়ান। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনে এক বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি ইউ অ্যালেক্সিস জনসন প্রথমবারের মতো বাংলাদেশকে 'তলাবিহীন ঝুড়ি'র সঙ্গে তুলনা দেন। ইংরেজিতে তিনি 'বাস্কেট কেস' শব্দাংশ ব্যবহার করেন।
১৯৭২ সালের যুদ্ধপরবর্তী সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে বাংলাদেশের বৈশ্বিক সহায়তা প্রয়োজন হতে পারে, এই প্রসঙ্গটি কিসিঞ্জারে সামনে তুলে ধরা হলে তিনি জানান, এই 'ঝুড়ির' দায় যুক্তরাষ্ট্রকেই নিতে হবে, বিষয়টি এমন নয়।
অনেকের কাছেই হেনরি কিসিঞ্জার ছিলেন আদ্যোপান্ত 'রিয়েলপলিটিক'—বাস্তব রাজনীতির প্রচারক, যার কাছে সামনে থাকা বাস্তবতা ও নিজ স্বার্থ রক্ষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ; এ ক্ষেত্রে মানবিকতা, নৈতিকতা বা অন্য কোনো বিষয় প্রাধান্য পায় না। এবং এটাই সত্য এই যে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মানবিক বিপর্যয় দূর করার উদ্যোগ নেওয়া বা এর নিন্দা জানানোর পরিবর্তে নিজেদের কূটনৈতিক লক্ষ্য অর্জনই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই নীতি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন কিসিঞ্জার।
তার এই অবস্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে তাকে নির্দয় ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তিনি নিজেই তার এই অবস্থান তৈরি করেছেন।
ইংরেজি থেকে ভাবানুবাদ করেছেন মাহমুদ নেওয়াজ জয়
আরওআলোচিত-সমালোচিত হেনরি কিসিঞ্জার ১০০ বছর বয়সে মারা গেলেন
১৯৭১ এর গ্রীষ্মে কিসিঞ্জার এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে ভারতে যান। সেখানে তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ সম্পর্কে ভারতের মনোভাব যাচাই করেন।
এরপর তিনি পাকিস্তান সফর করেন। সেখানে একনায়ক জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে চমকপ্রদ এক মতবিনিময় হয় তার। ইয়াহিয়া যখন তার কাছে জানতে চান, কিসিঞ্জার তাকে একনায়ক মনে করেন কিনা- জবাবে কিসিঞ্জার বলেন, 'আমি নিশ্চিত নই। আপনি যদি আদতে একজন একনায়ক হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি নির্বাচন আয়োজনে খুব একটা পারদর্শী নন।'
এই বাক্যালাপ থেকে আমরা কিসিঞ্জারের মনোভাব সম্পর্কে জানতে পারি—ঠিক কীভাবে তিনি এ অঞ্চলের পরিস্থিতিকে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তিনি ছিলেন এমন মার্কিন কূটনীতিক, যার সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ছিল। এ ক্ষেত্রে একনায়কের অপকর্ম বা জনগণের দুর্দশাকে বিবেচনায় নেওয়ার চিন্তা তার মাথায় আসেনি।
এই সাক্ষাতের সময়ই কিসিঞ্জারের পাকিস্তান থেকে গোপনে চীনে যাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়। রিচার্ড নিক্সনের ১৯৭২ সালের চীন সফরের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো নির্ধারণ করতেই তিনি সে সময় সেখানে যান।
১৯৭১ সাল জুড়ে চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ব্যাপারেই কিসিঞ্জার ও হোয়াইট হাউসকে তৎপর হতে দেখা যায়। বাংলাদেশের মানুষের ওপর পাকিস্তানের চালানো গণহত্যাকে তারা দেখেছেন বাড়তি ঝামেলা হিসেবে।
যুক্তরাষ্ট্র ধরে নেয়, গণহত্যার বিপক্ষে অবস্থান নিলে চীনের সঙ্গে আলোচনায় তাদের মূল্য মধ্যস্থতাকারী ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হবে।
নিক্সনের প্রশাসন দ্ব্যর্থহীনভাবে এই অবস্থানই ধরে রাখে। কারণ স্নায়ুযুদ্ধে তাদের নতুন সঙ্গী চীন পাকিস্তান সরকারের কার্যক্রমকেই সমর্থন দিতে থাকে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আনা প্রস্তাবে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে বাংলাদেশের বিজয়ের পথ বন্ধ করার চেষ্টা করে। তবে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সমর্থনে এই প্রচেষ্টা নস্যাৎ হয়।
বহু বাংলাদেশির কাছে হেনরি কিসিঞ্জার কুখ্যাত মানুষ। তিনি বাংলাদেশকে 'তলাবিহীন ঝুড়ি' আখ্যায়িত করে নিন্দা কুড়ান। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনে এক বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি ইউ অ্যালেক্সিস জনসন প্রথমবারের মতো বাংলাদেশকে 'তলাবিহীন ঝুড়ি'র সঙ্গে তুলনা দেন। ইংরেজিতে তিনি 'বাস্কেট কেস' শব্দাংশ ব্যবহার করেন।
১৯৭২ সালের যুদ্ধপরবর্তী সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে বাংলাদেশের বৈশ্বিক সহায়তা প্রয়োজন হতে পারে, এই প্রসঙ্গটি কিসিঞ্জারে সামনে তুলে ধরা হলে তিনি জানান, এই 'ঝুড়ির' দায় যুক্তরাষ্ট্রকেই নিতে হবে, বিষয়টি এমন নয়।
অনেকের কাছেই হেনরি কিসিঞ্জার ছিলেন আদ্যোপান্ত 'রিয়েলপলিটিক'—বাস্তব রাজনীতির প্রচারক, যার কাছে সামনে থাকা বাস্তবতা ও নিজ স্বার্থ রক্ষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ; এ ক্ষেত্রে মানবিকতা, নৈতিকতা বা অন্য কোনো বিষয় প্রাধান্য পায় না। এবং এটাই সত্য এই যে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মানবিক বিপর্যয় দূর করার উদ্যোগ নেওয়া বা এর নিন্দা জানানোর পরিবর্তে নিজেদের কূটনৈতিক লক্ষ্য অর্জনই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই নীতি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন কিসিঞ্জার।
তার এই অবস্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে তাকে নির্দয় ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তিনি নিজেই তার এই অবস্থান তৈরি করেছেন।
ইংরেজি থেকে ভাবানুবাদ করেছেন মাহমুদ নেওয়াজ জয়
আরওআলোচিত-সমালোচিত হেনরি কিসিঞ্জার ১০০ বছর বয়সে মারা গেলেন
| গত ২৯ নভেম্বর ১০০ বছর বয়সে মারা যাওয়া হেনরি কিসিঞ্জারকে নিয়ে বিশ্বজুড়ে প্রকাশিত হয়েছে নানান প্রতিক্রিয়া। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঊষালগ্নে তিনি ছিলেন প্রচণ্ড ক্ষমতাধর। |
মালদ্বীপ থেকে সেনা সরাতে রাজি ভারত: প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু | মালদ্বীপ থেকে সেনা সরিয়ে নিতে ভারত রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ মুইজ্জু।
দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম বিদেশ সফর শেষে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মালদ্বীপের ভেলানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (ভিআইএ) স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু এ তথ্য জানান।
প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু বলেন, 'আমাদের সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরদিনই আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় সেনা সরিয়ে নেওয়া অনুরোধ জানায়।'
তিনি আরও বলেন, 'এটা নির্বাচনী প্রচারণার সময় ভোট আদায়ের জন্য করা কোনো মন্তব্য নয়। যেহেতু আমি মালদ্বীপের নাগরিক তাই আমি মালদ্বীপের ও জাতির স্বার্থকে সামনে রাখতে চাই।
কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে সেনা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে এবং এ পর্যন্ত পাঁচটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানান দেশটির প্রেসিডেন্ট।
প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু বলেন, 'এর আগে নেওয়া সব প্রচেষ্টা এবং এখন পর্যন্ত নেওয়া প্রচেষ্টার সময় ভারত সরকার সেনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য আমাদের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছেছে।'
যত দ্রুত সম্ভব ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার কার্যকর হবে উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্ক অব্যাহত রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'এটি অর্জনের জন্য বর্তমানে চেষ্টা অব্যাহত আছে।'
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু আরও জানান, মালদ্বীপে ভারতের শুরু করা প্রকল্প গ্রহণে যে সব সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, তা দূর করতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের জন্য ভারত সরকারের সঙ্গে আরেকটি চুক্তি হয়েছে।
তিনি বলেন, 'উভয় দেশ উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনে সম্মত হয়েছে। ঋণ ও অন্যান্য জাতীয় সংকটের পাশাপাশি প্রকল্পগুলোর বিষয়ে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে।'
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত জাতিসংঘ ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের (কপ-২৮) কনফারেন্স অব দ্য পার্টিজের ২৮তম অধিবেশনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেন প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু।
বৈঠকের বিষয়ে মুইজ্জু বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী মোদি জানিয়েছেন যে তিনি মালদ্বীপের জনগণের গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তকে সম্মান করেন।'
মালদ্বীপের সরকারের তথ্য অনুসারে, দেশটিতে ৭৭ ভারতীয় সেনা মোতায়েন আছে।
| মালদ্বীপ থেকে সেনা সরিয়ে নিতে ভারত রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ মুইজ্জু। |
প্যারিসে ছুরির আঘাতে পর্যটক নিহত, হাতুড়ির আঘাতে আহত ২ | প্যারিসের জনপ্রিয় পর্যটনস্থল আইফেল টাওয়ারের কাছে এক ফরাসি যুবকের ছুরির আঘাতে জার্মান পর্যটক নিহত এবং হাতুড়ির আঘাতে আরও দুই জন আহত হয়েছেন।
গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় রাতে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেখাল্ড দাখমানার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৬ বছর বয়সী হামলাকারী ফরাসি নাগরিক। ২০১৬ সালে হামলার পরিকল্পনার অভিযোগে তার চার বছরের সাজা হয়। তিনি ফ্রান্সের নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারির তালিকায় ছিলেন। তাকে মানসিক সমস্যাগ্রস্ত হিসেবে দেখা হতো।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমকে জানান, একজনকে ছুরি দিয়ে আহত করায় হামলাকারীকে যখন পুলিশ গ্রেপ্তারের চেষ্টা করে তখন তিনি আরও দুইজনকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হামলাকারী 'আল্লাহু আকবর' স্লোগান দিচ্ছিলেন এবং পুলিশকে বলেছেন যে তিনি 'আফগানিস্তান ও ফিলিস্তিনে বহু মুসলমানের মৃত্যু' দেখে হতাশ।
সন্ত্রাসবিরোধী আদালত বলেছে তারা ঘটনার তদন্ত করছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্যারিসে অলিম্পিক আয়োজনের আট মাসের কম সময়ের মধ্যে এমন ঘটনা সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
| প্যারিসের জনপ্রিয় পর্যটনস্থল আইফেল টাওয়ারের কাছে এক ফরাসি যুবকের ছুরির আঘাতে জার্মান পর্যটক নিহত এবং হাতুড়ির আঘাতে আরও দুই জন আহত হয়েছেন। |
৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প, ফিলিপাইন-জাপানে সুনামির আশঙ্কা | ফিলিপাইনের মিন্দানাওতে আজ শনিবার ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এর কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬৩ কিমি গভীরে। এই ভূমিকম্পের ফলে শিগগির ফিলিপাইন ও জাপানে সুনামি আঘান হানবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় সিসমোলজিক্যাল সেন্টারের (ইএমএসসি) বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
ফিলিপাইন সিসমোলজি এজেন্সি জানিয়েছে, সুনামির ঢেউ ফিলিপাইনে স্থানীয় সময় মধ্যরাতের মধ্যে আঘাত হানতে পারে এবং কয়েক ঘণ্টা ধরে চলতে পারে।
জাপানি সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকে জানিয়েছে, জাপানে সুনামির আঘাত কিছুটা পরে আসবে। স্থানীয় সময় রোববার রাত দেড়টা নাগাদ ১ মিটার (৩ ফুট) উচ্চতার সুনামির ঢেউ জাপানের পশ্চিম উপকূলে পৌঁছবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্য অনুসারে, ভূমিকম্পটি ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ছিল এবং এর কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩২ কিলোমিটার গভীরে। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টার দিকে এটি আঘাত হানে।
| ফিলিপাইনের মিন্দানাওতে আজ শনিবার ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এর কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬৩ কিমি গভীরে। এই ভূমিকম্পের ফলে শিগগির ফিলিপাইন ও জাপানে সুনামি আঘান হানবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। |
লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩, আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে সীমান্ত | সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতির শেষে গাজায় আবার ইসরায়েলি হামলার প্রেক্ষাপটে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে ইসরায়েল-লেবানন সীমান্ত।
লেবাননে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার তারা ইসরায়েলের সামরিক অবস্থানে পাঁচবার হামলা চালিয়েছে। হিজবুল্লাহর হামলার জবাবে ইসরায়েল লেবাননে সীমান্তঘেঁষা গ্রামগুলোয় বোমা বর্ষণ করলে এক নারী ও তার ছেলে এবং অপর একজন নিহত হয়েছেন।
আজ শনিবার সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়—লেবাননের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ইসরায়েলের বোমা হামলায় সীমান্তবর্তী হুলা শহরে দুই জন ও জেব্বাইন গ্রামে একজন নিহত হয়েছেন।
সংবাদ সংস্থাটি আরও জানায়, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্য যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর ইসরায়েল-লেবানন সীমান্ত উত্তেজনা আবার শুরু হয়েছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত আট সপ্তাহে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে অন্তত ১৫ বেসামরিক ব্যক্তি ও হিজবুল্লাহর ৯০ যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের সামরিক অবস্থানে হামলার বিষয়ে হিজবুল্লাহর বার্তায় বলা হয়, 'অবিচল ফিলিস্তিনের জনগণ… এবং তাদের বীরত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক প্রতিরোধের প্রতি সমর্থন' জানিয়ে তারা এই হামলা চালিয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, লেবাননে জাতিসংঘের শান্তি মিশনের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, গতকাল দিন শেষে দক্ষিণ লেবাননের উপকূলীয় শহর নাকুরার কাছে তাদের সদরদপ্তরের পাশে এবং আইতা আল শাবে বোমা বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
এতে আরও জানানো হয়, লেবাননের আন্নাহার সংবাদপত্রের উপ-সম্পাদক নাবিল বৌমুনসেফ বলেছেন, 'সীমান্তে যা ঘটছে তার সঙ্গে হিজবুল্লাহ জড়িত।'
তিনি আরও বলেন, 'গাজায় যতদিন যুদ্ধ চলবে লেবাননও ততদিন যুদ্ধের হুমকিতে থাকবে।'
| সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতির শেষে গাজায় আবার ইসরায়েলি হামলার প্রেক্ষাপটে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে ইসরায়েল-লেবানন সীমান্ত। |
হুতিরা ইসরায়েলের জন্য কি ভয়ংকর হয়ে উঠছে | শিল্পোন্নত সাত দেশ বা জি-সেভেনের আলোচনায় 'ইরান সমর্থিত' হুতি। এই জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আন্তর্জাতিক নৌচলাচলের পথে হুমকি হয়ে না ওঠার জন্য হুতিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি তারা হুতিদের হাতে আটক পণ্যবাহী জাহাজ গ্যালাক্সি লিডার ও এর ক্রুদের দ্রুত মুক্তির আহ্বানও জানান।
গত বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
জি-সেভেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এমন আহ্বানে বোঝা যায়, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের গুরুত্ব এখন আর দেশটির চৌহদ্দির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এমনকি, আঞ্চলিক পরিসর ছাপিয়ে হুতিরা যে এখন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত বিষয়, তা এই সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহে উঠে আসছে।
গত সোমবার জার্মান গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, 'হুতিদের ইসরায়েলি জাহাজ আটকের কারণে বিপর্যয়ের মুখে আন্তর্জাতিক নৌচলাচল।'
বেসরকারি নৌচলাচল নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান সিগাল মেরিটাইমের চিফ অপারেটর অফিসার (সিওও) দিমিত্রিস মানিয়াতিস জার্মান গণমাধ্যমটিকে বলেন, 'আমরা আশঙ্কা করছি, এমন ঘটনা আরও ঘটবে। হুতিরা দেখিয়েছে যে তারা তা করার সামর্থ্য রাখে। তারা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায়। ইসরায়েলি জাহাজ সম্পর্কে তাদের কাছে তথ্য আছে। তারা জানে যে তারা কী করছে। তারা ইসরায়েলি জাহাজগুলোকে লক্ষ্য করবে। সেগুলোকে অনুসরণ করা খুবই সহজ।'
গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত পৃথিবীর অন্যতম দরিদ্র রাষ্ট্র ইয়েমেনের হুতিদের সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায় না। যা জানা যায় তা হচ্ছে—হুতিরা 'ইরান-সমর্থিত' বিদ্রোহী গোষ্ঠী। শিয়া মতাম্বলী এই গোষ্ঠী ইয়েমেনের স্বীকৃত সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করায় প্রতিবেশী সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যে সুন্নি মতাবলম্বী অন্যান্য আরব দেশকে সঙ্গে নিয়ে হুতিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এবং যুদ্ধ ঘোষণা করে।
তবে প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার দূর থেকে ইরান কীভাবে হুতিদের সমর্থন বা সহায়তা দিচ্ছে, সে সম্পর্কে বিশ্ব গণমাধ্যম থেকে সুনির্দিষ্টভাবে তেমন কিছু জানার সুযোগ কম।
বছর খানেক আগেও যখন হুতিরা প্রতিবেশী সৌদি আরবে নিয়মিত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালাত, তখন তা কেবল আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যম বিশেষ করে সৌদি সংবাদমাধ্যমেই শিরোনাম হতো।
গত ১৯ নভেম্বর এই হুতিরা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রধান শিরোনাম হয় মূলত লোহিত সাগরে ব্রিটিশ মালিকানাধীন ও জাপান থেকে পরিচালিত 'গ্যালাক্সি লিডার' জব্দ ও এর ২৫ ক্রুকে জিম্মি করার মধ্য দিয়ে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সশস্ত্র ব্যক্তিরা হেলিকপ্টারে করে জাহাজটির পিছু নেন। তারা হেলিকপ্টার থেকে জাহাজের ছাদে নামেন। জাহাজে উড়িয়ে দেন ফিলিস্তিন ও ইয়েমেনের পতাকা।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জাহাজ জব্দের সংবাদ বিশ্ব গণমাধ্যমকে জানিয়ে বলেন, এটি ইসরায়েলের না। যাদেরকে জিম্মি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে কোনো ইসরায়েলি নেই।
এই বার্তার মধ্য দিয়ে নেতানিয়াহু এক ধরনের স্বস্তি প্রকাশ করলেও এ ঘটনার পরপরই পশ্চিমের বিশ্লেষকদের আলোচনায় উঠে আসে হুতি প্রসঙ্গ।
গত ৭ অক্টোবর দুর্ভেদ্য সীমানা প্রাচীর ভেঙে অবরুদ্ধ গাজা থেকে হামাস ও ইসলামি জেহাদের সদস্যরা ইসরায়েলে হামলা চালালে তেল আবিব সব শক্তি নিয়ে গাজাবাসীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেসময় লেবাননে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ সশস্ত্র সংগঠনের মতো ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুতিরাও ইসরায়েলকে হুমকি দেয়।
এরপর হুতিরা হামাসের সমর্থনে প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার দূরের ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ইসরায়েল সেগুলো আকাশেই ধ্বংস করে দেওয়ায় আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের অনেকে হুতিদের 'গুরুত্বহীন' মনে করতে থাকেন। এ দৃশ্যপট পাল্টে যায় ১৯ নভেম্বর লোহিত সাগরে হুতিদের হাতে জাহাজ আটকের মধ্য দিয়ে।
গত ২৪ নভেম্বর ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম তেহরান টাইমসের মূল শিরোনাম হয়, 'ফিলিস্তিন ইস্যু ইয়েমেনের পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম অগ্রাধিকার'।
হুতি নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনি সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ও ইয়েমেনি বিমান বাহিনীর সাবেক মুখপাত্র মেজর জেনারেল আব্দুল্লাহ আল-জাফরি বিশেষ সাক্ষাৎকারে সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, 'আমাদের নেতা সৈয়দ আব্দুল মালিক বিন বদর আল দিন আল হুতি নির্দেশ দিয়েছেন যে, ইসরায়েলের যেকোনো জাহাজ অবশ্যই আটক করতে হবে।'
তিনি মনে করেন, গাজায় ইসরায়েল ও আমেরিকা আগ্রাসন চালাচ্ছে। ফিলিস্তিনের পক্ষে সমাবেশ করা ১০ লাখ ইয়েমেনি চায় এর জবাব দেওয়া হোক।
আব্দুল্লাহ আল-জাফরি আরও বলেন, 'ধর্ম, জাতীয়তা, নৈতিকতা, মানবিকতা ও ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে ইয়েমেন জোরালো কণ্ঠে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দিচ্ছে যে, তারা জায়নবাদীদের (ইসরায়েলপন্থি) বিরুদ্ধে সরাসরি সংঘাতে জড়াচ্ছে।'
প্রথম দিকে ইয়েমেনের সংখ্যালঘু শিয়া মতাম্বলীরা দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নি নেতৃত্বের বিরোধী ছিলেন। সেই নেতৃত্বের প্রতি সৌদি সমর্থন থাকায় নানা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হুতিরা হয়ে উঠেন সৌদিবিরোধী। এখন হুতিরা লড়াই করছেন মহাশক্তিধর যুক্তরাষ্ট্র ও এর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে।
গত সোমবার মার্কিন সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, গত রোববার ইয়েমেনের হুতি-নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে এডেন উপসাগরে টহলরত মার্কিন যুদ্ধজাহাজকে লক্ষ্য করে দুইটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে।
প্রতিবেদন অনুসারে—ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের এক বার্তায় বলা হয়, কয়েকজন অস্ত্রধারী ফসফরিক এসিড বহনকারী বাণিজ্যিক ট্যাংকার 'সেন্ট্রাল পার্ক' জব্দ করতে যাওয়ায় সহায়তার জন্য ট্যাংকারের ক্রুরা আবেদন জানালে মার্কিন নৌবাহিনী এগিয়ে আসে। সেসময় মার্কিন যুদ্ধজাহাজ লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়।
একই দিনে পেন্টাগনের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট রাইডার বলেন, আন্তর্জাতিক নৌপথের নিয়ম হচ্ছে যখন কেউ সহায়তার জন্য আবেদন করেন তখন কাছাকাছি থাকা জাহাজগুলোকে এগিয়ে আসতে হয়। তিনি জানান যে, সেসময় কাছাকাছি চীনা নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজ থাকলেও তারা 'সহায়তার ডাকে সাড়া দেয়নি'।
গত ১০ বছরের ঘটনা প্রবাহ দেখে মনে হচ্ছে, ইয়েমেনের 'ঘরোয়া শক্তি' থেকে 'আঞ্চলিক মাথাব্যথা' হয়ে ওঠা হুতিরা যেন গত ৭ অক্টোবরের পর ক্রমশ 'আন্তর্জাতিক হুমকি' হয়ে উঠছে।
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে হুতিদের 'জড়িয়ে পড়া'র প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ইসরায়েলকে ঘিরে ইরানের 'অগ্নিবলয়' সৃষ্টির সংবাদ জানানো হচ্ছে।
এই 'অগ্নিবলয়' বলতে বিশ্লেষকরা ভূমধ্যসাগর তীরে ইসরায়েলকে ঘিরে হামাস, হিজবুল্লাহ ও হুতিদের অবস্থানের পাশাপাশি সিরিয়া ও ইরাকে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর উপস্থিতির কথা নতুন করে জানান দিচ্ছেন।
গত ১৭ অক্টোবর দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের এক বিশ্লেষণী প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয়, 'বিস্তৃত যুদ্ধের মুখে মধ্যপ্রাচ্য, সব সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে ইরান'।
প্রতিবেদনে ওয়াশিংটনভিত্তিক মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ ফেলো ফিরাস মাকসাদ বলেন, 'হামাস যদি নির্মূল হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়, তাহলে ইরান কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত হাতে পেয়ে যাবে। ইরান তখন আঞ্চলিক কৌশলগত "অগ্নিবলয়" সামনে নিয়ে আসবে।'
পশ্চিমের চোখে হুতিরা বিদ্রোহী। কেননা, তারা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইয়েমেনি সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে দেশটির রাজধানী সানাসহ বিস্তৃত এলাকা দখলে নিয়েছে। দেশটির বাকি অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে ইয়েমেন সরকার ও প্রতিবেশী দেশগুলোর সমর্থন পাওয়া অন্যান্য সশস্ত্র সংগঠনগুলো।
২০১১ সালে আরব বসন্তের দমকা হাওয়ায় অনুপ্রাণিত গণতন্ত্রপন্থিদের আন্দোলনে ইয়েমেনে ২২ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট আলি আব্দুল্লাহ সালেহর পতন হয়। এরপর ক্ষমতা নেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদি। এক বছর পর নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রেসিডেন্ট হয়ে তিনি বিরোধীদের নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করলে হাদিবিরোধী বা সালেহপন্থিরা আবার ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন।
রাজনৈতিক সংকটের এমন ডামাডোলে ইয়েমেনের প্রেসিডেনশিয়াল ভবনে আত্মঘাতী হামলা চালানোর দায় স্বীকার করে আলোচনায় আসে আল কায়েদা। সন্ত্রাসীদের দমন করতে মার্কিন সেনাদের একটি 'ছোট দল' আসে ইয়েমেনে। এমন পরিস্থিতিতে আরও জটিল হয়ে উঠে ইয়েমেনের রাজনীতি।
২০১৪ সালে শিয়া নেতা সৈয়দ আব্দুল মালিক বিন বদর আল দিন আল হুতির নেতৃত্বে ইয়েমেনে শুরু হয় সরকার, সন্ত্রাস ও মার্কিনবিরোধী 'হুতি আন্দোলন'।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে হুতিদের তুলে ধরা হয় ইরানের সমর্থনপুষ্ট 'সন্ত্রাসী গোষ্ঠী' হিসেবে। ইরানের ভাষায় তারা ইয়েমেনের 'প্রতিরোধ যোদ্ধা'। তাদের সংগঠনের নাম 'আনসার আল্লাহ' হলেও তারা মূলত তাদের নেতা আল হুতির নামেই বেশি পরিচিত।
তবে হুতিরা যাই হোন না কেন মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সরব উপস্থিতি এখন যেন এটাই জানান দিচ্ছে যে—লোহিত সাগর তথা এডেন উপসাগর হয়ে যেসব জাহাজ ইসরায়েল বা ইউরোপ-আমেরিকা থেকে এশিয়ায় যাওয়া-আসা করবে, তাদেরকে বাড়তি নিরাপত্তার কথা মাথায় নিয়েই পথ চলতে হবে।
| শিল্পোন্নত সাত দেশ বা জি-সেভেনের আলোচনায় 'ইরান সমর্থিত' হুতি। এই জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আন্তর্জাতিক নৌচলাচলের পথে হুমকি হয়ে না ওঠার জন্য হুতিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি তারা হুতিদের হাতে আটক পণ্যবাহী জাহাজ গ্যালাক্সি লিডার ও এর ক্রুদের দ্রুত মুক্তির আহ্বানও জানান। |
আলোচিত-সমালোচিত হেনরি কিসিঞ্জার ১০০ বছর বয়সে মারা গেলেন | বিরোধীদের কাছে 'যুদ্ধবাজ' হিসেবে ঘৃণিত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার ১০০ বছর বয়সে মারা গেছেন।
গতকাল বুধবার তিনি কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে নিজ বাড়িতে মারা যান।
কিসিঞ্জারের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কিসিঞ্জার অ্যাসোসিয়েটস তার মৃত্যুর সংবাদ গণমাধ্যমকে জানালেও মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানায়নি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন'র প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী ও বিতর্কিত পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক ব্যক্তি কিসিঞ্জার তরুণ বয়সে জার্মানির নাৎসি বাহিনীর হাত থেকে প্রাণে বেঁচে যান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ছিলেন।
এতে আরও বলা হয়, ১৯৭০ এর দশকে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির অপর নাম ছিল 'হেনরি কিসিঞ্জার'। ভিয়েতনাম যুদ্ধ বন্ধে উদ্যোগ নেওয়ায় তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়। সমালোচকরা বলেন, কিসিঞ্জার মূলত ভিয়েতনামে মার্কিন বাহিনীর পরাজয় ঠেকাতে যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
কিন্তু, ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় প্রতিবেশী কম্বোডিয়ায় নির্বিচার বোমা বর্ষণের অভিযোগে তিনি নিন্দিত।
এ ছাড়াও, দক্ষিণ আমেরিকার দেশ চিলিতে সামরিক বাহিনীর হাতে নির্বাচিত সরকারের উৎখাতে সমর্থন দেন কিসিঞ্জার। এ কারণে তার নিন্দা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।
মধ্যপ্রাচ্যে আরব-ইসরায়েল সংঘাত বিস্তারে ও ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতিবাচক ভূমিকার জন্যও কিসিঞ্জার সমালোচিত।
| বিরোধীদের কাছে 'যুদ্ধবাজ' হিসেবে ঘৃণিত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার ১০০ বছর বয়সে মারা গেছেন। |
১৭ দিন পর সুড়ঙ্গে আটকা পড়া ৪১ শ্রমিকের সবাই উদ্ধার | ভারতের উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারি সুড়ঙ্গে আটকে পড়ার ১৭ দিন পর ৪১ শ্রমিকের সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত সোয়া ৯টার মধ্যে সব শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়েছে বলে এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
'র্যাট হোল মাইনিং' নামে পরিচিত 'ম্যানুয়াল ড্রিলিং' পদ্ধতি ব্যবহার করে আটকে পড়া শ্রমিকদের বের করা হয় সুড়ঙ্গ থেকে।
উদ্ধারকর্মীরা জানান, আটকে পড়া প্রত্যেক শ্রমিককে বাইরে বের করে আনতে ৫-৭ মিনিট করে সময় লেগেছে।
তাদের উদ্ধারের পর বিশেষভাবে পরিবর্তিত স্ট্রেচারে করে বের করে আনা হয়।
সেখানে স্থাপিত অস্থায়ী হাসপাতালে শ্রমিকদের প্রাথমিক শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে এবং ধীরে ধীরে তাদের বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর উপযোগী করা হয়েছে।
ন্যাশনাল ডিজাস্টার রিলিফ ফোর্সের কর্মীরা সুড়ঙ্গের ভেতরে গিয়ে শ্রমিকদের অবস্থার প্রাথমিক মূল্যায়ন করেন।
চিকিৎসকরা জানান, শ্রমিকদের সবাই সুস্থ আছেন।
সেখানে প্রত্যেক শ্রমিকের জন্য একটি করে অ্যাম্বুলেন্স রাখা আছে। জরুরি প্রয়োজনে শ্রমিকদের প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে ছিন্নলিসৌরে স্থাপিত জরুরি চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।
এছাড়া একটি হেলিকপ্টারও প্রস্তুত রাখা আছে শ্রমিকদের জন্য।
গত ১২ নভেম্বর উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলার একটি জাতীয় মহাসড়কে নির্মাণাধীন এই সুড়ঙ্গের একাংশ ধসে পড়ে। সুড়ঙ্গটির উচ্চতা সাড়ে আট মিটার এবং এটি প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ।
| ভারতের উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারি সুড়ঙ্গে আটকে পড়ার ১৭ দিন পর ৪১ শ্রমিকের সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে। |
আবারও ইসরায়েলি জাহাজ আটকের হুমকি হুতিদের, ড্রোন হামলা ঠেকাল যুক্তরাষ্ট্র | লোহিত সাগরে ইয়েমেনের হুতি-নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে ছোড়া বেশ কয়েকটি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় কমান্ডের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, আজ বৃহস্পতিবার ইয়েমেনের স্থানীয় সময় সকালে একটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজ লোহিত সাগরে টহল দেওয়ার সময় কয়েকটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করে।
কেন্দ্রীয় কমান্ডের বার্তায় বলা হয়, যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস টমাস হান্ডার সেই এলাকায় টহলের সময় ড্রোনগুলো ভূপাতিত করে। সেসময় জাহাজের কোনো ক্ষতি বা কোন ক্রু আহত হননি।
সিএনএন আরও জানায়, গতকাল হুতিদের নৌবাহিনী এক বার্তায় লোহিত সাগরে ইসরায়েলের পতাকাবাহী বা ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন যেকোনো জাহাজ আটকে দেওয়ার হুমকি নতুন করে আবারও দিয়েছে।
বার্তায় বলা হয়, 'গাজায় আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত' তারা ইসরায়েলি জাহাজ ও ইসরায়েলের স্বার্থের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালিয়ে যাবে।
এতে আরও বলা হয়, ইসরায়েলি জাহাজকে যারা রক্ষা করার চেষ্টা করবে তারাও হামলার শিকার হবে।
গত রোববার ইরান-সমর্থিত হুতিরা লোহিত সাগরে তুরস্ক থেকে ভারতগামী গ্যালাক্সি লিডার মালবাহী জাহাজ ও এর প্রায় ২৫ ক্রুকে আটক করে। জাপানের নিপ্পন ইউসেন কাইশা লাইন এই জাহাজটি পরিচালনা করছিল।
জাহাজসহ ক্রুদের যত দ্রুত সম্ভব মুক্তির জন্য ইসরায়েলের সঙ্গে কাজ করার পাশাপাশি সৌদি আরব, ওমান ও ইরানকে এ বিষয়ে সহায়তার অনুরোধ করেছে জাপান।
এর আগে গাজায় হামলার প্রতিবাদে হুতিরা ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ইয়েমেন থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়।
| লোহিত সাগরে ইয়েমেনের হুতি-নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে ছোড়া বেশ কয়েকটি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। |
জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে যুদ্ধবিরতির কোনো আলোচনাই হয়নি: নেতানিয়াহু | ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আবারও জোর দিয়ে জানিয়েছেন, হামাসের কাছে থাকা জিম্মিদের মুক্তি ও যুদ্ধ বিরতির বিষয়ে এখনো কোনো চুক্তি হয়নি।
আজ রোববার আল জাজিরা জানায়, শনিবার রাতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আবারও কথা বলেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
তিনি জানান, 'এখন পর্যন্ত' কোনো চুক্তি হয়নি এবং জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে 'অসংখ্য ভুল প্রতিবেদন' প্রকাশ করা হয়েছে।
'আমি বিষয়টি খোলাসা করে বলতে চাই। এখন পর্যন্ত, কোনো চুক্তি হয়নি। কিন্তু আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি: যখন আপনাদেরকে জানানোর মতো কিছু থাকবে-আমরা সেটা জানাব', বলেন তিনি।
বুধবার রয়টার্স জানায়, হামাস ৫০ জিম্মিকে মুক্ত করার বিনিময়ে ৩ দিন যুদ্ধ বিরতির শর্তে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে।
এ ধরনের কোনো চুক্তি নেতানিয়াহু নাকচ করেছেন কি না জানতে চাইলে নেতানিয়াহু বলেন, 'এ ধরনের কোনো চুক্তি আলোচনার টেবিলেই আসেনি'।
নেতানিয়াহুর ব্রিফিংয়ের কয়েক ঘণ্টা পর ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও হামাস ৫ দিনের যুদ্ধবিরতির শর্তে অসংখ্য নারী ও শিশুদের মুক্তি দেওয়ার চুক্তিতে একমত 'হওয়ার কাছাকাছি' পৌঁছেছে।
আরওমাহফুজ আনামের লেখা: ফিলিস্তিনে গণহত্যা ও পশ্চিমাদের নৈতিক অবস্থান
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেষ মুহুর্তে কোনো বাধা না আসলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে। এই আলোচনার বিষয়ে জানেন এমন কয়েকজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানায় মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি।
তবে হোয়াইট হাউস এই প্রতিবেদনের সত্যতা অস্বীকার করেছে। হোয়াইট হাউস জানায়, এ ধরনের কোনো চুক্তি এখনো হয়নি।
পশ্চিম তীরে ৭ অক্টোবরের পর থেকে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৪৮ শিশুও আছে।
অপরদিকে গাজায় প্রাণহানির সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার সরকারি মিডিয়া অফিস। গাজার হাসপাতালগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ার কারণে গাজার নিহতের সংখ্যা শুক্রবারের পর হালনাগাদ করা হয়নি।
বুধবার রয়টার্স জানায়, হামাস ৫০ জিম্মিকে মুক্ত করার বিনিময়ে ৩ দিন যুদ্ধ বিরতির শর্তে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে।
এ ধরনের কোনো চুক্তি নেতানিয়াহু নাকচ করেছেন কি না জানতে চাইলে নেতানিয়াহু বলেন, 'এ ধরনের কোনো চুক্তি আলোচনার টেবিলেই আসেনি'।
নেতানিয়াহুর ব্রিফিংয়ের কয়েক ঘণ্টা পর ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও হামাস ৫ দিনের যুদ্ধবিরতির শর্তে অসংখ্য নারী ও শিশুদের মুক্তি দেওয়ার চুক্তিতে একমত 'হওয়ার কাছাকাছি' পৌঁছেছে।
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেষ মুহুর্তে কোনো বাধা না আসলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে। এই আলোচনার বিষয়ে জানেন এমন কয়েকজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানায় মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি।
তবে হোয়াইট হাউস এই প্রতিবেদনের সত্যতা অস্বীকার করেছে। হোয়াইট হাউস জানায়, এ ধরনের কোনো চুক্তি এখনো হয়নি।
পশ্চিম তীরে ৭ অক্টোবরের পর থেকে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৪৮ শিশুও আছে।
অপরদিকে গাজায় প্রাণহানির সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার সরকারি মিডিয়া অফিস। গাজার হাসপাতালগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ার কারণে গাজার নিহতের সংখ্যা শুক্রবারের পর হালনাগাদ করা হয়নি।
তবে হোয়াইট হাউস এই প্রতিবেদনের সত্যতা অস্বীকার করেছে। হোয়াইট হাউস জানায়, এ ধরনের কোনো চুক্তি এখনো হয়নি।
পশ্চিম তীরে ৭ অক্টোবরের পর থেকে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৪৮ শিশুও আছে।
অপরদিকে গাজায় প্রাণহানির সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার সরকারি মিডিয়া অফিস। গাজার হাসপাতালগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ার কারণে গাজার নিহতের সংখ্যা শুক্রবারের পর হালনাগাদ করা হয়নি।
| ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আবারও জোর দিয়ে জানিয়েছেন, হামাসের কাছে থাকা জিম্মিদের মুক্তি ও যুদ্ধ বিরতির বিষয়ে এখনো কোনো চুক্তি হয়নি। |
ফিলিপাইনে ৬.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ৬ জনের মৃত্যু | ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে ছয় দশমিক সাত মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাতে এখন পর্যন্ত ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে কর্তৃপক্ষ নিখোঁজ আরও দুইজনকে খুঁজছে।
আজ শনিবার ফিলিপাইনের স্থানীয় দুর্যোগ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্সেস জানিয়েছে, শুক্রবার বিকেলে মিন্দানাও দ্বীপে ভূপৃষ্ঠের ৬০ কিলোমিটার গভীরে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
দক্ষিণ কোটাবাতো প্রদেশের জেনারেল সান্তোস সিটির দুর্যোগ দপ্তরের প্রধান আগ্রিপিনো দাসেরা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সেখানে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে কংক্রিটের দেয়াল ধসে এক দম্পতি এবং শপিংমলে আরও এক নারী মারা গেছেন।
উপকূলীয় শহর গ্লানের দুর্যোগ মোকাবিলা কর্মকর্তা অ্যাঞ্জেল দুগাদুগা রয়টার্সকে জানান, সারঙ্গানি প্রদেশের কেন্দ্রস্থলের কাছে অন্তত দুইজন নিহত হয়েছেন এবং ভূমিধসের পর নিখোঁজ আরও দুজনকে খুঁজছেন উদ্ধারকারীরা।
দাভাও অঞ্চলের সিভিল ডিফেন্স অফিসার ফ্রাঞ্জ ইরাগ ডিডব্লিউপিএম রেডিওকে বলেন, সেখানে পাথরের আঘাতে ৭৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তি মারা গেছেন।
দুর্যোগ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় স্বাভাবিক করা হয়েছে এবং বেশিরভাগ রাস্তা চলাচলযোগ্য আছে। বেশকিছু বাড়ি-ঘর ও ভবনের সামান্য ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
| ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে ছয় দশমিক সাত মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাতে এখন পর্যন্ত ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে কর্তৃপক্ষ নিখোঁজ আরও দুইজনকে খুঁজছে। |
ডেভিড ক্যামেরন যুক্তরাজ্যের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী | যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক তার মন্ত্রিসভায় রদবদল এনেছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নতুন করে দায়িত্ব নিয়েছেন। সেই সঙ্গে দক্ষিণপন্থী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রেভারম্যানকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছেন তিনি। নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সদ্যসাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলিকে।
গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধের দাবিতে যুক্তরাজ্যজুড়ে চলমান বিক্ষোভ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে ব্যাপক সমালোচনার মুখে ছিলেন সুয়েলা ব্রেভারম্যান। তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেছিলেন, ফিলিস্তিনপন্থীদের প্রতি সহানুভূতি দেখাচ্ছে পুলিশ। উগ্র ডানপন্থীদেরকে উস্কানি দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের সম্পর্কে তিনি বলেছিলেন, তাদেরকে রুয়ান্ডায় পাঠিয়ে দেওয়া যেতে পারে। গৃহহীনদের ব্যাপারেও অসংবেদনশীল মন্তব্যের কারণে তিনি সমালোচিত ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তারা স্বেচ্ছায় গৃহহীন থাকেন।
অন্যদিকে, কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ক্যামেরন ২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। যুক্তরাজ্যের জনগণ গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় দেওয়ার পর পদত্যাগ করেছিলেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নতুন দায়িত্ব নেওয়ার পর ক্যামেরন বলেছেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুক্তরাজ্যের জন্য বেশ কিছু কঠিন চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তিনি 'খুশি মনে' নতুন দায়িত্ব নিয়েছেন।
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ ও ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে ক্যামেরন বলেন, আমি মনে করি কনজারভেটিভ পার্টির নেতা হিসেবে ১১ বছরের অভিজ্ঞতা ও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ছয় বছরের অভিজ্ঞতা আমাকে প্রধানমন্ত্রী সুনাকের গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সহায়তা করবে।
লিবিয়া থেকে মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে উৎখাত করতে পশ্চিমা দেশগুলোকে নেতৃত্বে দিয়েছিলেন ক্যামেরন। গাদ্দাফির অপসারণের পর গভীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছিল লিবিয়া।
২০১৩ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রতিক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের অনুগত বাহিনীর বিরুদ্ধে সামরিক হামলা চালাতে পার্লামেন্টের অনুমতি চেয়েছিলেন ক্যামেরন। তবে পার্লামেন্ট থেকে তিনি সেই অনুমতি পাননি।
২০২১ সালে আর্থিক প্রতিষ্ঠান গ্রিনসিলের পক্ষে লবি করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ক্যামেরন। প্রতিষ্ঠানটি পরে দেউলিয়া হয়ে যায়।
| যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক তার মন্ত্রিসভায় রদবদল এনেছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নতুন করে দায়িত্ব নিয়েছেন। সেই সঙ্গে দক্ষিণপন্থী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রেভারম্যানকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছেন তিনি। নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সদ্যসাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলিকে। |
যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান এরদোয়ানের | গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণ বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
আজ রোববার তিনি এ আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'ওয়াশিংটন গাজাকে ফিলিস্তিনের ভূমি হিসেবে মেনে না নেওয়া পর্যন্ত কোনো চুক্তি হবে না।'
বার্তাসংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়ে বলা হয়, এরদোয়ান গতকাল শনিবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে আরব ও মুসলিম নেতৃবৃন্দের একটি শীর্ষ সম্মেলন থেকে ফিরেছেন। সেখানে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার নিন্দা জানানো হয়েছে।
এরদোয়ান শুক্রবার জার্মানি সফর করবেন। সামনে মিশর ভ্রমণের এবং ইরানের প্রেসিডেন্টকে তুরস্কে স্বাগত জানানোর কথা রয়েছে তার।
রিয়াদ থেকে ফিরতি ফ্লাইটে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'আমাদের মিশর ও উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা উচিত এবং যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ দেওয়া উচিত। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ইসরায়েলের ওপর তার চাপ বাড়ানো, পশ্চিমা দেশগুলোর উচিত ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়ানো। যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা আমাদের জন্য অত্যাবশ্যক।'
'এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে দেশটিকে যুক্ত করতে হবে তা হলো যুক্তরাষ্ট্র। তাদের প্রভাব রয়েছে ইসরায়েলের ওপর', বলেন তিনি।
সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আঙ্কারা সফর করেছেন।
সামনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা উড়িয়ে না দিলেও এরদোয়ান বলেন, তিনি এখন বাইডেনকে আমন্ত্রণ জানাবেন না।
এরদোয়ান বলেন, 'ব্লিঙ্কেন এইমাত্র এখানে (তুরস্কে) এসেছেন। আমার ধারণা এখন বাইডেন আমাদের আমাদের আমন্ত্রণ জানাবেন। আমার এখন বাইডেনকে ডাকা ঠিক হবে না।'
যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই গাজাকে ফিলিস্তিনি ভূমি হিসেবে মেনে নিতে হবে উল্লেখ করে এরদোয়ান বলেন, 'বাইডেন যদি সংঘাতের ক্ষেত্রে গাজাকে ফিলিস্তিনি জনগণের ভূমির পরিবর্তে দখলদার বসতি স্থাপনকারীদের বা ইসরায়েলের ভূমি হিসেবে দেখেন তাহলে আমরা তার সঙ্গে একমত হতে পারি না।'
রোববার তুর্কি টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত আরেকটি বক্তব্যে এরদোয়ানকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।
তিনি বলেন, 'নেতানিয়াহু, এখন আপনার ভাল সময়। কিন্তু আরও ভিন্ন ভিন্ন সময় আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। নেতানিয়াহু,আপনার জানা উচিত, আপনি চলে যাচ্ছেন।'
এরদোয়ান আগামী সপ্তাহে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের সঙ্গে দেখা করবেন।
তুরস্ক ইইউ সদস্যপদ প্রার্থী। কিন্তু এরদোয়ান হামাসের পক্ষ নেওয়ায় এবং সেটি ইইউর অবস্থানের বিপরীত হওয়ায় কিছুটা অস্বস্তি তৈরি হয়েছে।
এই সপ্তাহে প্রকাশিত প্রার্থী দেশগুলোর অগ্রগতি বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে ইইউ বলেছে, হামাসের সমর্থনে তুরস্কের বক্তব্য ইইউর ধারার সঙ্গে একেবারেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
ফ্রাইটে সাংবাদিকদের এরদোয়ান বলেন, 'ইউরোপীয় ইউনিয়ন হামাসের ব্যাপারে ইসরায়েলের মতো করেই ভাবে। আমি হামাসকে একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে দেখছি, যারা ফিলিস্তিনের নির্বাচনে জয়ী হয়েছে। আমি এটাকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যেভাবে দেখে, সেভাবে দেখি না।'
সংঘাত নিরসনে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আহ্বান জানান তিনি।
| গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণ বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। |
গ্র্যামির মনোনয়ন পেলেন নরেন্দ্র মোদি | বিশ্বসংগীতের সবচেয়ে বড় আসর গ্র্যামি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
'অ্যাবানডান্স ইন মিলেট' শিরোনামে একটি গানের সহ-লেখক হিসেবে তিনি এই মনোনয়ন পেয়েছেন।
গ্র্যামি পুরস্কার-২০২৪ এর বেস্ট গ্লোবাল মিউজিক পারফরম্যান্স বিভাগে মনোনীত হয়েছে এই গান।
গানটি গেয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ফালু ফাল্গুনী শাহ এবং তার স্বামী গৌরব শাহ।
বেস্ট গ্লোবাল মিউজিক পারফরম্যান্স ক্যাটাগরিতে ফাল্গুনী, গৌরব ও মোদি ছাড়াও মনোনয়ন পেয়েছে আরুজ আফতাব, বিজয় আইয়ার, শাহজাদ ইসমাইলির 'শ্যাডো ফোর্স', ব্রুনা বয়ের 'অ্যালোন', ডাভিডোর 'ফিল'-সহ আরও অনেক বিখ্যাত শিল্পীর গান।
| বিশ্বসংগীতের সবচেয়ে বড় আসর গ্র্যামি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। |
আইসল্যান্ডে ১৪ ঘণ্টায় ৮০০ ভূমিকম্প, অগ্ন্যুৎপাতের আশঙ্কায় জরুরি অবস্থা | আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের আশঙ্কায় ভূমিকম্পের পর আইসল্যান্ডে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। সতর্কতা হিসেবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর গ্রিন্দাভিকে বসবাসকারী কয়েক হাজার মানুষকে সরিয়ে নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
বিবিসি জানায়, অক্টোবরের শেষ থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম আইসল্যান্ডে ২০ হাজারের বেশি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় রেইকজেনেস উপদ্বীপে শুক্রবার ১৪ ঘণ্টায় ৮০০ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এটিকে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুত্পাতের পূর্বাভাস বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ফ্যাগ্রাডালসফজল আগ্নেয়গিরির চারপাশে এই ভূমিকম্পের কারণে উদ্বেগ জানিয়েছে আইসল্যান্ডের আবহাওয়া অফিস। প্রচুর পরিমাণে ম্যাগমাগলিত শিলা ভূগর্ভে ছড়িয়ে পড়ছে বলে উদ্বেগ জানায় তারা।
আইসল্যান্ডের নাগরিক সুরক্ষা ও জরুরি ব্যবস্থাপনা বিভাগ এক বিবৃতিতে জানায়, ম্যাগমা টানেল গ্রিন্দাভিকে পৌঁছাতে পারে এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে পারছে না আবহাওয়া অফিস। এ কারণেই সতর্কতা হিসেবে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত এসেছে।
সবাইকে শান্ত থাকার জন্য আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'সবাইকে অবশ্যই শহর ছেড়ে যেতে হবে। তবে এটি কোনো জরুরি স্থানান্তর নয়। কোনো তাৎক্ষণিক বিপদ আসন্ন নেই। প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসেবে গ্রিন্দাভিক বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।'
শহরের সব রাস্তা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বন্ধ রয়েছে, যাতে যানজট এড়ানো যায়।
আবহাওয়া অফিস বলছে, ভূমিকম্পের কার্যকলাপে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটেছে। ম্যাগমা সম্ভবত শহরের নিচে প্রসারিত হয়েছে। কোথায়, কখন অগ্নুৎপাত হবে তা 'ঠিক নির্ধারণ করা সম্ভব নয়'।
এর আগে ২০২১ সালের শুরু থেকে জুলাই ২০২৩ পর্যন্ত রেকজেনেস উপদ্বীপে ৩টি অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটে।
আইসল্যান্ডে রয়েছে ৩৩টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি, যা ইউরোপে সর্বোচ্চ। আগ্নেয়গিরিবিদরা মনে করেন, আগ্নেয়গিরি বাড়ার নতুন চক্র কয়েক দশক বা শতাব্দী ধরে চলতে পারে।
| আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের আশঙ্কায় ভূমিকম্পের পর আইসল্যান্ডে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। সতর্কতা হিসেবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর গ্রিন্দাভিকে বসবাসকারী কয়েক হাজার মানুষকে সরিয়ে নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। |
চীন সীমান্তের ২ সড়ক বিদ্রোহীদের দখলে, হুমকির মুখে মিয়ানমারের অর্থনীতি | মিয়ানমারের শান রাজ্যের ৩টি জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী দীর্ঘদিন দেশটিতে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের বিরোধিতা করে আসছে। সম্প্রতি বিদ্রোহীরা জান্তা সরকারের বেশ কয়েকটি সামরিক চৌকি, সীমান্ত পারাপার এবং রাস্তা দখল করে নিয়েছে।
এএফপি জানায়, বিদ্রোহীরা কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ২টি রাস্তা অবরুদ্ধ করে রেখেছে। ওই সীমান্ত পারাপার ও রাস্তা ব্যবহার করে চীনের সঙ্গে স্থল বাণিজ্যের বেশিরভাগ পরিচালিত হয়।
দুই সপ্তাহ ধরে উত্তর শান রাজ্যজুড়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের লড়াই চলছে। জাতিসংঘ জানায়, সংঘর্ষে প্রায় ৫০ হাজার লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ২০২১ সালে ক্ষমতা দখলের পর থেকে সেনা সরকারের কাছে এটাই সবচেয়ে গুরুতর সামরিক চ্যালেঞ্জ।
আরাকান আর্মি, মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি এবং তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির যোদ্ধারা ২৭ অক্টোবর তাদের আক্রমণ শুরু করার পর থেকে উত্তর শান রাজ্যের রাজধানী মিউজ অঞ্চল থেকে পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে।
রাস্তা বন্ধ থাকায় ইতোমধ্যেই এর প্রভাব বাজারে পড়তে শুরু করেছে। পাশাপাশি জান্তা সরকারও সেখানে সৈন্য পাঠাতে পারছে না।
চীনের সীমান্তবর্তী মিউজ শহরের একজন বাসিন্দা এএফপিকে বলেছেন, '২৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আমরা কোনো মালবাহী ট্রাককে পারাপার করতে দেখিনি। কোনো বাণিজ্য ক্রসিং চালু নেই। শহর থেকে নিয়মিত কামান ও গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।'
ওই সড়ক দিয়ে দিনে কয়েকশ ট্রাক ফল ও সবজি নিয়ে মিয়ানমার থেকে চীনে যায়। পাশাপাশি চীন থেকে ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি, ওষুধ ও ভোগ্যপণ্য মিয়ানমারে আসে।
প্রায় ১৬০ কিলোমিটার (১০০ মাইল) দূরে লাশিও শহরেও এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। সেখানকার এক বাসিন্দা বলেন, 'আগে এক বস্তা চালের দাম ছিল ১ লাখ ৬০ হাজার কিয়াট (৭৬ ডলার)। এখন এর দাম ১ লাখ ৯০ হাজার কিয়াট। যদি সংঘাত চলতে থাকে, তাহলে আমাদের বেঁচে থাকা কঠিন হবে।'
চীনের ইউনান প্রদেশের সীমান্তের আরেকটি কেন্দ্র চিনশওয়েহাও বিদ্রোহীদের দখলে রয়েছে। গত সপ্তাহে, এমএনডিএএ সীমান্ত গেটে তাদের পতাকা উত্তোলনের ভিডিও পোস্ট করেছে। সামরিক সরকার পরে স্বীকার করে যে তারা শহরটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে।
দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বরের শুরু পর্যন্ত মিয়ানমারের প্রতিবেশীদের সঙ্গে সীমান্ত বাণিজ্যের ৫.৩২ বিলিয়ন ডলারের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি চিনশওয়েহা এবং মিউজ ক্রসিং থেকে এসেছে।
| মিয়ানমারের শান রাজ্যের ৩টি জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী দীর্ঘদিন দেশটিতে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের বিরোধিতা করে আসছে। সম্প্রতি বিদ্রোহীরা জান্তা সরকারের বেশ কয়েকটি সামরিক চৌকি, সীমান্ত পারাপার এবং রাস্তা দখল করে নিয়েছে। |
গাজায় প্রতি ১০ মিনিটে এক শিশু নিহত: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা | গাজা উপত্যকায় গড়ে প্রতি ১০ মিনিটে এক শিশু নিহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানম গেব্রেয়াসুস।
রয়টার্স জানায়, শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে তিনি বলেছেন, গাজায় এখন 'কোনো জায়গাই নিরাপদ নয় এবং কেউই নিরাপদে নেই'।
তিনি আরও বলেন, 'গাজার ৩৬ টি হাসপাতালের অর্ধেক এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর দুই-তৃতীয়াংশই এখন বন্ধ। এছাড়া এখনও যেসব হাসপাতাল ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র চালু রয়েছে, সেগুলোরও যথেষ্ট সক্ষমতা নেই। স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।'
১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক আরও বলেন, 'হাসপাতালের করিডোরগুলোতে আহত, অসুস্থ, মৃত ব্যক্তি ভিড়। মর্গ উপচে পড়ছে। অ্যানেস্থেসিয়া ছাড়াই অস্ত্রোপচার হচ্ছে। হাজার হাজার ঘরহারা মানুষ হাসপাতালে আশ্রয় নিচ্ছেন।'
তিনি আরও বলেন, ৭ অক্টোবর থেকে গাজা ও পশ্চিম তীরে স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে ২৫০টিরও বেশি হামলার খবর পেয়েছে ডব্লিউএইচও। অন্যদিকে ইসরায়েলি স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতেও ২৫টি হামলা হয়েছে।
ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, হামাসের সদস্যরা হাসপাতালের নিচে সুড়ঙ্গে অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছে। যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে হামাস।
ইসরায়েলের জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান নিরাপত্তা পরিষদকে জানান, ইসরায়েল দক্ষিণ গাজায় হাসপাতাল স্থাপনের জন্য একটি টাস্কফোর্স তৈরি করেছে।
| গাজা উপত্যকায় গড়ে প্রতি ১০ মিনিটে এক শিশু নিহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানম গেব্রেয়াসুস। |
নেপালে ভূমিকম্পে মৃত বেড়ে ১৩২ | নেপালে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে মৃত বেড়ে ১৩২ জনে দাঁড়িয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০০ জনেরও বেশি মানুষ।
আজ শনিবার বার্তাসংস্থা এএফপির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে এতে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৩২ জন মারা গেছেন এবং আরও ১০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। বর্তমানে দেশটির আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ দশমিক ছয় মাত্রার ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল ১৮ কিলোমিটার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, ভূমিকম্পের আঘাতে ধসে পড়া ঘর-ভবন থেকে জীবিতদের বের করার চেষ্টা করছেন স্থানীয়রা।
ভূমিকম্পে করনালি প্রদেশের দুই জেলা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নারায়ণ প্রসাদ ভট্টরাই এএফপিকে বলেছেন, ভূমিকম্পের আঘাতে জাজারকোটে ৯২ জন ও রুকুমে ৪০ জন মারা গেছেন।
ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত দুই জেলায় ১০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন নেপাল পুলিশের মুখপাত্র কুবের কাথায়াত।
নেপালের করনালি প্রদেশ পুলিশের মুখপাত্র গোপাল চন্দ্র ভট্টরাই এএফপিকে বলেছেন, উদ্ধার কাজ পরিচালনার জন্য দেশটির আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল পরিমাণ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতেও কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ভারতীয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা জানিয়েছেন, দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শহর লখনউ ও পাটনায় শুক্রবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
এর কয়েক ঘণ্টা পর একই এলাকায় ভূমিকম্প-পরবর্তী কম্পন হয় বলে জানিয়েছে ইউএসজিএস, যার মাত্রা ছিল চার।
ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল।
এই ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে প্রতিবেশী দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, নেপালকে প্রয়োজনীয় যেকোনো সহায়তা দিতে ভারত প্রস্তুত আছে।
২০১৫ সালে নেপালে সাত দশমিক আট মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় নয় হাজার মানুষ মারা যায় এবং ২২ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়। এতে প্রায় আট হাজার স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যায়, যার ফলে শ্রেণিকক্ষবিহীন হয়ে পড়ে প্রায় ১০ লাখ শিশু। সেই ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে যায় স্মৃতিসৌধ ও রাজপ্রাসাদসহ কয়েকশ দর্শনীয় স্থান।
গত বছরের নভেম্বরে জাজারকোটের নিকটবর্তী দোতি জেলায় পাঁচ দশমিক ছয় মাত্রার ভূমিকম্পে ছয়জনের মৃত্যু হয়।
আরওনেপালে ভূমিকম্পে অন্তত ১১৯ জনের মৃত্যু
| নেপালে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে মৃত বেড়ে ১৩২ জনে দাঁড়িয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০০ জনেরও বেশি মানুষ। |
নেপালে ভূমিকম্পে অন্তত ১১৯ জনের মৃত্যু | নেপালে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে অন্তত ১১৯ জন মারা গেছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০০ জন।
আজ শনিবার বার্তাসংস্থা এএফপির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে এতে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত অন্তত ১১৯ জন মারা গেছেন এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০০ জন। বর্তমানে দেশটির আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ দশমিক ছয় মাত্রার ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল ১৮ কিলোমিটার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, ভূমিকম্পের আঘাতে ধসে পড়া ঘর-ভবন থেকে জীবিতদের বের করার চেষ্টা করছেন স্থানীয়রা।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতেও কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
নেপালের করনালি প্রদেশ পুলিশের মুখপাত্র গোপাল চন্দ্র ভট্টরাই এএফপিকে বলেছেন, উদ্ধার কাজ পরিচালনার জন্য দেশটির আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল পরিমাণ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
'ভূমিকম্পে কিছু রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে আমরা বিকল্প পথে ওই এলাকায় পৌঁছানোর চেষ্টা করছি', বলেন তিনি।
আরওনেপালে ২৫ মিনিটের ব্যবধানে ২ ভূমিকম্প
| নেপালে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে অন্তত ১১৯ জন মারা গেছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০০ জন। |
আহত রোগী ও বিদেশি নাগরিকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে রাফাহ সীমান্ত | রাফাহ ক্রসিং খুলে দেওয়া হয়েছে। গেট খুলে দেওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই অসংখ্য মানুষ ও গাড়ি গেট পার হয়ে মিশরের দিকে এগোতে দেখা যায়।
আজ বুধবার আলজাজিরা এই তথ্য জানায়। বাংলাদেশ সময় দুপুর পৌনে ২টার দিকে সীমান্ত খুলে দেওয়া হয়।
গাজার ক্রসিংয়ের জেনারেল অথরিটি আল জাজিরাকে জানায়, ৩৩৫ জন বিদেশি পাসপোর্টধারী ও ৭৬ জন আহত ফিলিস্তিনি এবং তাদের সঙ্গীরা রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে মিশরে প্রবেশ করেছে।
রাফা ক্রসিং খুলে দেওয়ার কয়েক মিনিট আগে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি বলেন, তিনি আশা করছেন 'বিদেশি নাগরিকের প্রথম দলটি' আজ গাজা ছেড়ে যাবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে তিনি বলেন, 'যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধিরা দেশটির নাগরিকদের সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছেন। তারা সীমান্ত পার হলেই সহায়তা পাবেন।'
তিনি আরও বলেন, 'গাজার বাসিন্দাদের জীবন বাঁচাতে সেখানে মানবিক ত্রাণ দ্রুত পৌঁছানো খুবই জরুরি।'
সিএনএন এক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, গাজা থেকে সব বিদেশি নাগরিক ও গুরুতর আহত বেসামরিক ব্যক্তিদের মুক্তি দেওয়া হবে। কাতারের মধ্যস্থতায় এ বিষয়ে একটি ঐক্যমতে পৌঁছেছে ইসরায়েল, হামাস ও মিশর। বিষয়টিতে সমন্বয়কারীর ভূমিকা পালন করে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে এই চুক্তির সঙ্গে জিম্মি মুক্তি আলোচনার কোনো সম্পর্ক নেই। কবে, কখন এবং কতজন মুক্তি পাবেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।
গতকাল মঙ্গলবার বার্তাসংস্থা এএফপি জানায়, রাফাহ সীমান্তে অসংখ্য অ্যাম্বুলেন্স এসে জমায়েত হয়েছে। সংস্থাটি এক মিশরীয় চিকিৎসা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানায়, 'সীমান্তে মেডিকেল টিম উপস্থিত থেকে আহতদের পরীক্ষা করবে। তারা নির্ধারণ করবে কাকে কোন হাসপাতালে পাঠানো হবে।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তা আরও জানান, রাফাহ থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে উত্তর সিনাই উপদ্বীপে অবস্থিত শেখ জুয়ায়েদ শহরে একটি ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করা হবে। সেখানে আহত ফিলিস্তিনিদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে।
আজ সকালে আল জাজিরার সাংবাদিকরা রাফাহ সীমান্ত থেকে জানিয়েছিলেন, বেশ কয়েকজন মানুষ রাফাহ ক্রসিংয়ের গেটের সামনে অপেক্ষা করছেন। বেশ কিছু অ্যাম্বুলেন্স ও অন্যান্য গাড়িও দেখা গেছে সেখানে।
| রাফাহ ক্রসিং খুলে দেওয়া হয়েছে। গেট খুলে দেওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই অসংখ্য মানুষ ও গাড়ি গেট পার হয়ে মিশরের দিকে এগোতে দেখা যায়। |
গাজা যুদ্ধে বিভক্ত ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা | ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এক টুইটের পর প্রকাশিত হয়েছে দেশটির রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রী ও সামরিক সংস্থাগুলোর মধ্যকার ফাটল।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার মধ্যরাতের ঠিক পরে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু লিখেছেন, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার সতর্কতা বিষয়ে তাকে কিছুই জানানো হয়নি। তার পরিবর্তে নেতানিয়াহু এই হামলার জন্য সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা প্রধানকে দায়ী করেছেন। যে হামলায় অন্তত ১ হাজার ৪০০ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। নেতানিয়াহু আরও বলেছেন, হামলার আগে তাদের ধারণা ছিল হামাস 'ভয় পেয়ে মীমাংসার জন্য' প্রস্তুত।
নেতানিয়াহুর বক্তব্যে দেশটিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। গাজায় সামরিক অভিযানের মধ্যে নেতানিয়াহুর এ ধরনের বক্তব্যকে রাজনৈতিক খেলা হিসেবে অভিহিত করে তার বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন দেশটির অন্যান্য রাজনৈতিক নেতারা। সমালোচনার মাত্রা এতটাই কঠোর ছিল যে প্রধানমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত টুইটটি মুছে ফেলতে বাধ্য হন এবং অপেক্ষাকৃত নরম সুরে পোস্টটির জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, 'আমার ভুল হয়েছে।'
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ঘটনা রাজনৈতিক দল ও সামরিক সংস্থাগুলো মধ্যে একটি বড় ধরনের ফাটলের উপস্থিতি প্রমাণ করেছে। এ ঘটনায় অনেকের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, নেতা হিসেবে তিনি ব্যক্তিগত স্বার্থকে পাশকাটিয়ে দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে পারবেন কি না?
ব্রিটিশ থিংকট্যাংক চ্যাথাম হাউসের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা প্রোগ্রামের সহযোগী ফেলো ইয়োসি মেকেলবার্গ বলেছেন, 'তিনি সঠিক অবস্থানে ছিলেন বলাটা হবে এ বছরের সবচেয়ে আন্ডারস্টেটমেন্ট।'
তিনি বলেছেন, 'খুবই কঠিন একটি সামরিক অভিযান চলছে, তাই আপনারা একজন দায়িত্বশীল প্রধানমন্ত্রী চান। তবে (সরকারে) এমন একজন ব্যক্তিও নেই যিনি নেতানিয়াহুকে বিশ্বাস করেন- এটি এই মন্ত্রিসভার প্রধান সমস্যা।'
গত ৭ অক্টোবরের পরই নেতানিয়াহু একটি যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন। যেখানে বেশ কয়েকজন সাবেক উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা আছেন।
নেতানিয়াহুর বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন অন্যান্য নেতারাও। বিরোধী দলের পার্লামেন্ট সদস্য আভিগডর লিবারম্যান বলেছেন, 'নেতানিয়াহু দেশের নিরাপত্তার বিষয়ে আগ্রহী নন, তিনি জিম্মিদের প্রতিও আগ্রহী নন, শুধু রাজনীতির বিষয়ে আগ্রহী'
তবে ইসরায়েল সেনাবাহিনীর শীর্ষ মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি এ বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেছেন, 'আমরা যুদ্ধের মধ্যে আছি।'
| ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এক টুইটের পর প্রকাশিত হয়েছে দেশটির রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রী ও সামরিক সংস্থাগুলোর মধ্যকার ফাটল। |
গাজায় যুদ্ধবিরতি হবে না, এটা যুদ্ধের সময়: নেতানিয়াহু | গাজায় যুদ্ধবিরতি হবে না জানিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এটা যুদ্ধের সময়।
বিবিসি জানায়, তেল আবিবে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয়ের অঙ্গীকার করেছেন। তাই গাজায় যুদ্ধবিরতি হবে না।
তিনি বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র যেমন পার্ল হারবার কিংবা ৯/১১ এর সন্ত্রাসী হামলার মতো ঘটনার ক্ষেত্রে যুদ্ধবিরতি করতে রাজি হবে না, ঠিক তেমনই ইসরায়েলও ৭ অক্টোবরের হামলার ঘটনার পর হামাসের সঙ্গে শত্রুতা বন্ধ করবে না।'
'যুদ্ধবিরতির ডাক দেওয়া মানেই ইসরায়েলকে হামাসের কাছে, সন্ত্রাসবাদের কাছে আত্মসমর্পণ করার ডাক দেওয়া,' বলেন তিনি।
'আমাদের সাধারণ ভবিষ্যতের জন্য একটি যুদ্ধ। আজ, আমরা সভ্যতার শক্তি এবং বর্বরতার শক্তির মধ্যে একটি রেখা আঁকছি।'
নেতানিয়াহু বলেন, 'বাইবেল বলে, শান্তির একটি সময় আছে এবং যুদ্ধেরও সময় আছে। এটা যুদ্ধের সময়। আমাদের ভবিষ্যতের জন্য যুদ্ধ। আজ আমরা সভ্যতা এবং বর্বর শক্তি – এ দুইয়ের মধ্যে সীমারেখা টেনে দিয়েছি।'
বিশ্বেরও এই বর্বরদের বিরুদ্ধে লড়ার ইচ্ছা হতেই হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
| গাজায় যুদ্ধবিরতি হবে না জানিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এটা যুদ্ধের সময়। |
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের দুর্দশার কথা জানানো হলো জাতিসংঘকে | মালয়েশিয়া সরকারের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ায় দেশটিতে বাংলাদেশের কয়েকশ অভিবাসী শ্রমিকের দুর্দশার কথা জানানো হলো জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনের কার্যালয়কে।
আজ রোববার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ফ্রি মালয়েশিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিবাসী শ্রমিক ও শ্রম অধিকারকর্মী অ্যান্ডি হল জেনেভায় জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের ওএইচসিএইচআরকে পাঠানো চিঠিতে বলেছেন, মালয়েশিয়ায় চাকরিহীন ও ঋণের জালে জড়িয়ে পড়া বাংলাদেশি শ্রমিকরা 'চরম পরিস্থিতি'র মধ্যে আছেন।
চিঠিতে তিনি মালয়েশিয়ায় অভিবাসী শ্রমিকদের জীবনযাত্রার নিম্নমান, বিশেষ করে ছোট জায়গায় বেশি মানুষের থাকা, অপর্যাপ্ত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, সীমিত পরিমাণ খাবার ও ঋণভারের মতো বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
তিনি নথিভুক্ত অভিযোগগুলো জাতিসংঘের বিশেষ দূতদের কাছেও পাঠিয়েছেন।
মালয়েশিয়া সরকারের হিসাবে দেশটিতে অতিরিক্ত আড়াই লাখের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক থাকার বিষয়টিও অ্যান্ডি হল চিঠিতে তুলে ধরেন।
তিনি আরও বলেন, 'ঘটনা পর্যালোচনা ও মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের ভিত্তিতে আমি ইউএনএইচআরসিকে অনুরোধ করছি মালয়েশিয়ার এই সংকটের সমাধানে ওএইচসিএইচআরের বিশেষ ব্যবস্থাগুলো কার্যকর ধরা হোক।'
অ্যান্ডি হল বলেন, 'মালয়েশিয়া সরকার স্বীকার করেছে যে সেখানে অতিরিক্ত আড়াই লাখের বেশি (বাংলাদেশি) অভিবাসী শ্রমিক আছেন। তারা জোরপূর্বক কাজ, আধুনিক দাসত্ব ও ঋণের বেড়াজালে আবদ্ধ।'
তিনি মনে করেন, কীভাবে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা ব্যাখ্যা করা সরকারের দায়িত্ব। যদি প্রবাসী শ্রমিকদের কাজের আবেদনগুলো সঠিক হয় তাহলে দেশটিতে অতিরিক্ত শ্রমিক থাকার কথা নয়।
সম্প্রতি, মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন ইসমাইল বলেছেন যে, অভিবাসী শ্রমিক নেওয়ার নীতিমালা শিথিল ও এর সুযোগ নেওয়ায় দেশটির কারখানা ও সেবাখাতে অতিরিক্ত আড়াই লাখের বেশি শ্রমিক রয়ে গেছেন।
নথিভুক্ত এক ঘটনার বরাত দিয়ে অ্যান্ডি হল বলেন, যথাযথ খাবার ও থাকার ব্যবস্থা না থাকায় ৪০০ বাংলাদেশির চরম সংকটে থাকার অভিযোগ আছে।
তিনি বলেন, অভিযোগ আছে যে সেসব শ্রমিকরা খুবই ছোট জায়গায় গাদাগাদি করে থাকছেন। তারা স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়ছেন।
'এক কক্ষে ১৪ জন থাকছেন। আমি তাদের কাছ থেকে ভিডিও পেয়েছি। যে এজেন্টরা তাদেরকে এনেছে তারা এই শ্রমিকদের প্রত্যেককে খাবারের জন্য ২০০ রিঙ্গিত করে দিয়েছে। কিন্তু, এ দিয়ে বেশি দিন টিকে থাকা সম্ভব না।'
চুক্তি মোতাবেক শ্রমিকদের পুরো বেতন ও অন্যান্য সুযোগসুবিধা দিতে হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন শ্রমিকরা ভীতিকর পরিস্থিতিতে আছেন, কেননা তাদের হাতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই। তারা ভয়ে কোনো কাজের জন্যও ঘরের বাইরে যেতে পারেন না।
শ্রমিকদের এমন পরিস্থিতির মধ্যে রাখা হয়েছে যা দালাল, নিয়োগকর্তা ও মালয়েশিয়া সরকারের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ বিষয়ে ওএইচসিএইচআর, মালয়েশিয়ার শ্রমবিভাগ ও বাংলাদেশ হাইকমিশনের মন্তব্য নিতে পারেনি ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে।
| মালয়েশিয়া সরকারের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ায় দেশটিতে বাংলাদেশের কয়েকশ অভিবাসী শ্রমিকের দুর্দশার কথা জানানো হলো জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনের কার্যালয়কে। |
ব্রাজিলে ২ মাসের ব্যবধানে আবারও উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, নিহত ১২ | দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে প্রায় দুই মাসের ব্যবধানে আবারও উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে। দেশটির উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় আকরি রাজ্যে একটি ছোট উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ১২ জন নিহত গেছেন।
গতকাল রোববার আকরি রাজ্য সরকারের বার্তায় বলা হয়, রিও ব্রানকো বিমানবন্দরের কাছে সিঙ্গেল ইঞ্জিন সেসনা কারাভান উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছে।
সেই বার্তার বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, বিধ্বস্ত উড়োজাহাজে এক শিশুসহ ১০ যাত্রী ছিলেন। দুর্ঘটনায় পাইলট ও কো-পাইলটও নিহত হয়েছেন।
বার্তায় যাত্রীদের পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি।
উড়োজাহাজটি পার্শ্ববর্তী আমাজোনাস রাজ্যের ইনভিরায় শহরে যাচ্ছিল। স্থানীয় প্রতিষ্ঠান এআরটি ট্যাক্সি এইরিয়ো এই উড়োজাহাজটি পরিচালনা করছিল।
প্রতিবেদনে অনুসারে, গত দুই মাসের কম সময়ে ব্রাজিলে এটি দ্বিতীয় উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা। গত মাসে আমাজোনাস রাজ্যে আরেকটি ছোট উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ১০ যাত্রী ও দুই ক্রু নিহত হন। যাত্রীরা সবাই ব্রাজিলীয় পর্যটক ছিলেন।
| দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে প্রায় দুই মাসের ব্যবধানে আবারও উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে। দেশটির উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় আকরি রাজ্যে একটি ছোট উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ১২ জন নিহত গেছেন। |
গাজায় নিহতের সংখ্যা নিয়ে বাইডেনের ‘সন্দেহ’ | অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহতের সংখ্যা নিয়ে 'সন্দেহ' প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
আজ বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদন অনুসারে, গতকাল বুধবার সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন যে 'ফিলিস্তিনিরা নিহতের যে সংখ্যা বলছে তাতে তার আস্থা নেই।'
গাজায় বেসামরিক মানুষদের হতাহত কমানোর জন্য ইসরায়েল যথেষ্ট চেষ্টা করছে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে বাইডেন এই মন্তব্য করেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, 'আমি মনে করি না যে ফিলিস্তিনিরা নিহতের সংখ্যা নিয়ে সত্য বলছে। আমি নিশ্চিত যে নিরীহ মানুষ মারা গেছেন। তবে তা হচ্ছে যুদ্ধ উসকে দেওয়ার ফল।'
তার ভাষ্য, 'ইসরায়েলকে খুবই সতর্ক থাকতে হবে। তারা যেন তাদের ওপরই দৃষ্টি রাখে যারা এই যুদ্ধ শুরু করেছে। তবে ফিলিস্তিনিরা মৃতের যে সংখ্যা বলছে তাতে আমার বিশ্বাস নেই।'
গাজায় হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় সাড়ে ছয় হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে দুই হাজার ৭০০ শিশু।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এমন মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শীর্ষ মানবাধিকার সংগঠন কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (সিএআইআর)।
সংগঠনটির বার্তায় বলা হয়, 'সাংবাদিকরা হতাহতের এই সংখ্যা নিশ্চিত করছেন। প্রতিদিন নারী ও শিশুদের মরদেহের অগণিত ভিডিও প্রকাশিত হচ্ছে। শহরে একটি বিশাল অংশ মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে।'
'প্রেসিডেন্ট বাইডেনের উচিত এসব ভিডিও দুই-একটি দেখা। নিজেকে প্রশ্ন করা—বিধ্বস্ত বাড়ির ধ্বংসস্তূপ থেকে শিশুর মরদেহ বের করে আনার দৃশ্য বানানো ও তা যুদ্ধ উসকে দেওয়ার ফল কিনা।'
| অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহতের সংখ্যা নিয়ে 'সন্দেহ' প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। |
যুক্তরাষ্ট্রের মেইন অঙ্গরাজ্যে গুলিতে নিহত অন্তত ২২ | যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় মেইন অঙ্গরাজ্যের লিউইসটন শহরে তিনটি পৃথক জায়গায় বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৫০ থেকে ৬০ জন।
গতকাল বুধবার রাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসির বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায়।
লিউইসটন পুলিশের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য সান জার্নাল জানায়, ধারণা করা হচ্ছে তিনটি কাছাকাছি জায়গায় গুলির ঘটনা ঘটেছে। একটি হচ্ছে, স্পেয়ারটাইম রিক্রিয়েশন ও অন্য দুইটি—শিমেনগিজ বার অ্যান্ড গ্রিল রেস্টুরেন্ট ও ওয়ালমার্ট বিতরণ কেন্দ্র।
লিউইসটন পুলিশ বিভাগ সন্দেহভাজন ব্যক্তির তিনটি ছবি প্রকাশ করেছে। ছবিতে সেই ব্যক্তির হাতে সেমি-অটোমেটিক রাইফেল দেখা যায়। পুলিশ এই ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে জনগণের সহায়তা চেয়েছে।
এর আগে রাজ্য ও স্থানীয় পুলিশ এক সক্রিয় বন্দুকধারীর কথা জানিয়েছিল। তারা আরও জানিয়েছিল যে সেই ব্যক্তি পলাতক আছেন এবং তাকে খোঁজা হচ্ছে।
সে সময় পুলিশ হতাহতের সংবাদ দিতে পারেনি।
অ্যানড্রোসকোগিন কাউন্টির শেরিফের কার্যালয় থেকেও সন্দেহভাজন ব্যক্তির ছবি প্রকাশ করা হয়। তাতে দেখা যায় বাদামি রঙের জ্যাকেট ও জিন্স পরা এক ব্যক্তি গুলি করার প্রস্তুতি নিয়ে রাইফেল ধরে আছেন।
মেইন রাজ্য পুলিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ জানিয়েছে, 'লিউইসটনে সক্রিয় বন্দুকধারী আছেন। আমরা সবাইকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে অনুরোধ করছি। অনুগ্রহ করে ঘরে থাকুন। ঘরের দরজা বন্ধ রাখুন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেশ কয়েকটি জায়গায় তদন্ত চালাচ্ছে।'
| যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় মেইন অঙ্গরাজ্যের লিউইসটন শহরে তিনটি পৃথক জায়গায় বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছেন। |
গাজায় ইসরায়েলের হামলা যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে পরিচালিত হচ্ছে: খামেনি | গাজায় ইসরায়েল যে হামলা চালাচ্ছে, তা যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে পরিচালিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।
আজ বুধবার এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তেহরানে দেওয়া ভাষণে খামেনি বলেন, 'নিশ্চিতভাবে যুক্তরাষ্ট্র অপরাধীদের সহযোগী। গাজায় যে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, কোনো না কোনোভাবে তা পরিচালনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।'
তিনি বলেন, 'মার্কিনীদের হাত নিপীড়িত, শিশু, রোগী, নারী এবং অন্যদের রক্তে রঞ্জিত।'
'এই বিষয় এবং ভবিষ্যতের বিষয়গুলো সম্পর্কে সবাইকে জানতে দিন যে, ফিলিস্তিনি জাতি বিজয়ী এবং ভবিষ্যৎ বিশ্ব ফিলিস্তিনের বিশ্ব, ইহুদিবাদী শাসকের বিশ্ব নয়', বলেন খামেনি।
এর আগে গতকাল মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ইরানকে সতর্ক করে বলেছেন যে, তেহরানের প্রক্সিদের দ্বারা কোনো আঘাত এলে যুক্তরাষ্ট্র তার 'সুস্পষ্ট' জবাব দেবে।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে ব্লিঙ্কেন বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে সংঘাত চায় না। আমরা চাই না এই যুদ্ধের প্রসার ঘটুক।'
'তবে ইরান বা তার প্রক্সিরা যদি কোথাও মার্কিন নাগরিকদের ওপর আক্রমণ করে- আমরা আমাদের জনগণকে রক্ষা করব, আমরা আমাদের নিরাপত্তা রক্ষা করব- দ্রুতগতিতে এবং সন্দেহাতীতভাবে', যোগ করেন তিনি।
ব্লিঙ্কেনের এই হুঁশিয়ারিকে 'ইরানের ওপর দোষ চাপানোর ভুল প্রচেষ্টা' বলে উল্লেখ করেছে তেহরান।
জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি আমির সাইদ ইরাভানি বলেন, 'তেহরান এই ভিত্তিহীন অভিযোগকে স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।'
| গাজায় ইসরায়েল যে হামলা চালাচ্ছে, তা যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে পরিচালিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। |
রাষ্ট্রের গোপনীয় তথ্য ফাঁস মামলায় অভিযুক্ত ইমরান খান | রাষ্ট্রের গোপনীয় তথ্য ফাঁস মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশিকে অভিযুক্ত করেছে দেশটির একটি আদালত।
আজ সোমবার পাকিস্তানের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে গঠিত বিশেষ আদালতে শুনানির পর বিচারক আবুল হাসনাত জুলকারনাইন দুজনকে অভিযুক্ত করেন।
দেশটির গণমাধ্যম ডন জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কাছে থাকা একটি কূটনৈতিক নথি হারিয়ে গেছে বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইমরানের দল তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) অভিযোগ, ওই নথিতে ইমরানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি ছিল।
এর আগে, গত ৫ আগস্ট তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। দেশটির হাইকোর্ট অবশ্য ২৯ আগস্ট সাজা স্থগিত করেন। কিন্তু তথ্য ফাঁস (সাইফার) মামলায় তিনি জুডিশিয়াল কাস্টডিতে ছিলেন।
তথ্য ফাঁস মামলায় ৩০ সেপ্টেম্বর দেশটির ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ) সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুরেশিকে প্রধান অভিযুক্ত উল্লেখ করে বিশেষ আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।
চার্জশিটে বলা হয়, ইমরান কূটনৈতিক বার্তা 'অবৈধভাবে আটকে রেখেছেন এবং ভুল ব্যবহার করেছেন।' ওই বার্তায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্কের রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ছিল।
এতে আরও বলা হয়, ইমরান খান ওই নথিটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফেরত দেননি। ইমরানকে এতে সহায়তা করেছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুরেশি এবং এ কারণে তিনিও এ কাজের জন্য দায়ী।
আজ রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে স্থাপিত বিশেষ আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে মামলার শুনানি শুরু হয় এবং ২৭ অক্টোবর পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
ইমরানের আইনজীবী জানান, বিশেষ আদালতের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে।
| রাষ্ট্রের গোপনীয় তথ্য ফাঁস মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশিকে অভিযুক্ত করেছে দেশটির একটি আদালত। |
ইরানকে যে বার্তা দিল যুক্তরাষ্ট্র | ফিলিস্তিনের গাজায় টানা দুই সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলার ঘটনায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা এরই মধ্যে সাড়ে ৪ হাজার ছড়িয়েছে। ইসরায়েল অবিলম্বে সামরিক অভিযান বন্ধ না করলে পুরো মধ্যপ্রাচ্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে ইরান। এর জবাবে পাল্টা সতর্কবার্তা দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
চলমান সংঘাতের মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে, এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ইরানকে সতর্ক করেছে ব্লিঙ্কেন। তিনি সিবিএস নিউজকে বলেছেন, 'আমাদের কর্মী, আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে ইরানের প্রক্সি ওয়ারের মাত্রা বৃদ্ধির সম্ভাবনার বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।'
তিনি আরও বলেন, 'এটি আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে বলে আমরা মনে করছি।'
যুদ্ধের সুদূরপ্রসারী পরিণতির বিষয়ে এটা আরেকটি সতর্কবার্তা।
এর আগে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু লেবাননের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক শক্তি হিজবুল্লাহকে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন।
ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশ।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেবাননের সঙ্গে ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ছে। এ ঘটনায় ইসরায়েল সেখান থেকে তাদের জনগণকে সরিয়ে নিচ্ছে।
গাজার সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধকে 'ডু অর ডাই' বলেও অভিহিত করেছেন নেতানিয়াহু।
| ফিলিস্তিনের গাজায় টানা দুই সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলার ঘটনায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা এরই মধ্যে সাড়ে ৪ হাজার ছড়িয়েছে। ইসরায়েল অবিলম্বে সামরিক অভিযান বন্ধ না করলে পুরো মধ্যপ্রাচ্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে ইরান। এর জবাবে পাল্টা সতর্কবার্তা দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। |
আবারও নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডেকেছে রাশিয়া | যুক্তরাষ্ট্রের বাধার কারণে প্রথমবার ব্যর্থ হওয়ার পর আবারও নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডেকেছে রাশিয়া।
গতকাল শনিবার বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে সৌদি সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়া এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল জাতিসংঘে রুশ উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি দিমিত্রি পলিয়ানস্কি সোলোভিয়ভ টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকারে বলেন যে রাশিয়া চায় গাজার মানবিক পরিস্থিতি এবং ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধ নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদ আরেকটি বৈঠক করুক।
ইসরায়েলের গোলায় বিধ্বস্ত গাজায় যুদ্ধ বন্ধে মস্কোর উদ্যোগ গত সোমবার ব্যর্থ হয়। যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে যে প্রস্তাব তোলা হয় যুক্তরাষ্ট্র তাতে ভেটো দেয়। প্রস্তাবে হামাসের কথা উল্লেখ না থাকায় যুক্তরাষ্ট্র এর সমালোচনা করে।
দিমিত্রি পলিয়ানস্কি বলেন, 'আমরা আবারও নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডেকেছি। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে আমাদেরকেই বারবার এই কাজটি করতে হচ্ছে।'
তবে রাশিয়া কবে এই বৈঠক ডেকেছে সে সম্পর্কে রুশ প্রতিনিধি কিছু বলেননি।
আল আরাবিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া বারবার ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছে। তবে ইরানের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক ক্রমাগত জোরালো হওয়ায় দীর্ঘদিনের বন্ধু ইসরায়েলের সঙ্গে এর সম্পর্ক জটিল হয়ে পড়েছে।
শান্তি আলোচনা শুরু আহ্বান জানিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জাামিন নেতানিয়াহু এবং ইরান ও আরব নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
| যুক্তরাষ্ট্রের বাধার কারণে প্রথমবার ব্যর্থ হওয়ার পর আবারও নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডেকেছে রাশিয়া। |
৬.১ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপলো কাঠমান্ডু | হিমালয়কন্যা নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু ও এর আশেপাশে ৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে।
আজ রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৩৯ মিনিটে এই ভূমিকম্প হয়।
দেশটির জাতীয় ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট জানায়, ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল ধাদিং জেলায়।
এই ভূকম্পন বাগমতি ও গানদাকি প্রদেশের কয়েকটি জেলাতেও অনুভূত হয়েছে।
তবে ক্ষয়ক্ষতির কোনো সংবাদ এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
কাঠমান্ডু পোস্ট'র প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তিব্বতীয় ও ভারতীয় টেকটনিক প্লেটের ভাঁজে নেপালের অবস্থান হওয়ায় দেশটিতে প্রায়ই ভূমিকম্প হয়ে থাকে। এই প্লেট দুইটি প্রতি শতাব্দীতে দুই মিটার করে এগিয়ে আসছে। সেই চাপেই নেপালে ভূমিকম্প হচ্ছে।
২০১৫ সালে নেপালে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত নয় হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
নেপাল সরকারের হিসাবে দেশটি পৃথিবীর ১১তম ভূমিকম্প-প্রবণ এলাকা।
| হিমালয়কন্যা নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু ও এর আশেপাশে ৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। |
৪ বছরের ‘স্বেচ্ছা নির্বাসন’ শেষে পাকিস্তানে ফিরলেন নওয়াজ শরিফ | ক্ষমতাচ্যুত ও সাজাপ্রাপ্ত পাকিস্তানের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ লন্ডনে চার বছর 'স্বেচ্ছা নির্বাসন' কাটিয়ে পাকিস্তানে ফিরেছেন।
আজ শনিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ১৬ মিনিটে নওয়াজ শরিফকে বহনকারী উড়োজাহাজ দুবাই থেকে ইসলামাবাদ বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমানবন্দরে নওয়াজ শরীফকে স্বাগত জানাতে সাবেক আইনমন্ত্রী সিনেটর আজম তারারসহ পিএমএল-এনের আইনি টিম ও দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
দলের বরাত দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ দেশটির পার্লামেন্ট নির্বাচনের তিন মাস আগে তার দলের প্রচারণা শুরু করতে লন্ডন থেকে দেশে এসেছেন।
সংবাদ সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লন্ডন থেকে নওয়াজ শরিফ দুবাই আসেন। সেখানে তিনি গত কয়েক দিন অবস্থান করেন।
পাকিস্তানে আসার আগ মুহূর্তে দুবাই বিমানবন্দরে নওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, 'চার বছর পর আজ আমি পাকিস্তানে ফিরে যাচ্ছি। আমি যখন দেশ ছেড়েছিলাম, তখন আমার মনে সুখ ছিল না। তবে, আজ আমি খুশি।'
আগামী বছরের জানুয়ারিতে হতে যাওয়া নির্বাচনকে সামনে রেখে তার দলের সম্ভাবনা পুনরুজ্জীবিত করতে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করার আগে তিনি বেশ কয়েকটি আইনি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারেন।
দলের নেতা ইসহাক দার গণমাধ্যমকে বলেন, নওয়াজ আজ স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় 'মিনার-ই-পাকিস্তান'-এ যাবেন, সেখানে সমাবেশে ভাষণ দেবেন।
দুর্নীতির দায়ে ১৪ বছরের কারাভোগের সময় ২০১৯ সালে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাওয়ার পর থেকে নওয়াজ শরিফ পাকিস্তানে আসেননি। তার সাজা বহাল আছে, তবে গত বৃহস্পতিবার আদালত তাকে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত গ্রেপ্তার না করার আদেশ দিয়েছে। সেদিন তাকে আদালতে হাজির করা হবে।
| ক্ষমতাচ্যুত ও সাজাপ্রাপ্ত পাকিস্তানের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ লন্ডনে চার বছর 'স্বেচ্ছা নির্বাসন' কাটিয়ে পাকিস্তানে ফিরেছেন। |